The Old Testament of the Holy Bible
1 শুরুতে, ঈশ্বর আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন| প্রথমে পৃথিবী সম্পূর্ণ শূন্য ছিল; পৃথিবীতে কিছুই ছিল না| 2 অন্ধকারে আবৃত ছিল জলরাশি আর ঈশ্বরের আত্মা সেই জলরাশির উপর দিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল| 3 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আলো ফুটুক!” তখনই আলো ফুটতে শুরু করল| 4 আলো দেখে ঈশ্বর বুঝলেন, আলো ভাল| তখন ঈশ্বর অন্ধকার থেকে আলোকে পৃথক করলেন| 5 ঈশ্বর আলোর নাম দিলেন, “দিন” এবং অন্ধকারের নাম দিলেন “রাত্রি|”সন্ধ্যা হল এবং সেখানে সকাল হল| এই হল প্রথম দিন| 6 তারপর ঈশ্বর বললেন, “জলকে দুভাগ করবার জন্য আকাশমণ্ডলের ব্যবস্থা হোক|” 7 তাই ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের সৃষ্টি করে জলকে পৃথক করলেন| এক ভাগ জল আকাশমণ্ডলের উপরে আর অন্য ভাগ জল আকাশমণ্ডলের নীচে থাকল| 8 ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের নাম দিলেন “আকাশ|” সন্ধ্যা হল আর তারপর সকাল হল| এটা হল দ্বিতীয় দিন| 9 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আকাশের নীচের জল এক জায়গায় জমা হোক যাতে শুকনো ডাঙা দেখা যায়|” এবং তা-ই হল| 10 ঈশ্বর শুকনো জমির নাম দিলেন, “পৃথিবী” এবং এক জায়গায় জমা জলের নাম দিলেন, “মহাসাগর|” ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে| 11 তখন ঈশ্বর বললেন, “পৃথিবীতে ঘাস হোক, শস্যদায়ী গাছ ও ফলের গাছপালা হোক| ফলের গাছগুলিতে ফল আর ফলের ভেতরে বীজ হোক| প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করুক| এইসব গাছপালা পৃথিবীতে বেড়ে উঠুক|” আর তাই-ই হল| 12 পৃথিবীতে ঘাস আর শস্যদায়ী উদ্ভিদ উত্পন্ন হল| আবার ফলদাযী গাছপালাও হল, ফলের ভেতরে বীজ হল| প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে| 13 সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল| এভাবে হল তৃতীয় দিন| 14 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আকাশে আলো ফুটুক| এই আলো দিন থেকে রাত্রিকে পৃথক করবে| এই আলোগুলি বিশেষ সভাশুরু করার বিশেষ বিশেষ সংকেত হিসেবে ব্যবহৃত হবে| আর দিন ও বছর বোঝাবার জন্য এই আলোগুলি ব্যবহৃত হবে| 15 পৃথিবীতে আলো দেওয়ার জন্য এই আলোগুলি আকাশে থাকবে|” এবং তা-ই হল| 16 তখন ঈশ্বর দুটি মহাজ্যোতি বানালেন| ঈশ্বর বড়টি বানালেন দিনের বেলা রাজত্ব করার জন্য আর ছোটটি বানালেন রাত্রিবেলা রাজত্ব করার জন্য| ঈশ্বর তারকারাজিও সৃষ্টি করলেন| 17 পৃথিবীকে আলো দেওয়ার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে স্থাপন করলেন| 18 দিন ও রাত্রিকে কর্তৃত্ত্ব দেবার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে সাজালেন| এই আলোগুলি আলো আর অন্ধকারকে পৃথক করে দিল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে| 19 সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল| এভাবে চতুর্থ দিন হল| 20 তারপর ঈশ্বর বললেন, “বহু প্রকার জীবন্ত প্রাণীতে জল পূর্ণ হোক আর পৃথিবীর ওপরে আকাশে ওড়বার জন্য বহু পাখী হোক|” 21 সুতরাং ঈশ্বর বড় বড় জলজন্তু এবং জলে বিচরণ করবে এমন সমস্ত প্রাণী সৃষ্টি করলেন| অনেক প্রকার সামুদ্রিক জীব রয়েছে এবং সে সবই ঈশ্বরের সৃষ্টি| যত রকম পাখী আকাশে ওড়ে সেইসবও ঈশ্বর বানালেন| এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটি ভাল হয়েছে| 22 ঈশ্বর এই সমস্ত প্রাণীদের আশীর্বাদ করলেন| ঈশ্বর সামুদ্রিক প্রাণীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করে সমুদ্র ভরিয়ে তুলতে বললেন| ঈশ্বর পৃথিবীতে পাখীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে বললেন| 23 সন্ধ্যা হয়ে গেল এবং তারপর সকাল হল| এভাবে পঞ্চম দিন কেটে গেল| 24 তারপর ঈশ্বর বললেন, “নানারকম প্রাণী পৃথিবীতে উত্পন্ন হোক| নানারকম বড় আকারের জন্তু জানোয়ার আর বুকে হেঁটে চলার নানারকম ছোট প্রাণী হোক এবং প্রচুর সংখ্যায় তাদের সংখ্যাবৃদ্ধি হোক|” তখন য়েমন তিনি বললেন সব কিছু সম্পন্ন হল| 25 সুতরাং ঈশ্বর সব রকম জন্তু জানোয়ার তেমনভাবে তৈরী করলেন| বন্য জন্তু, পোষ্য জন্তু আর বুকে হাঁটার সবরকমের ছোট ছোট প্রাণী ঈশ্বর বানালেন এবং ঈশ্বর দেখলেন প্রতিটি জিনিসই বেশ ভালো হয়েছে| 26 তখন ঈশ্বর বললেন, “এখন এস, আমরা মানুষ সৃষ্টি করি| আমাদের আদলে আমরা মানুষ সৃষ্টি করব| মানুষ হবে ঠিক আমাদের মত| তারা সমুদ্রের সমস্ত মাছের ওপরে আর আকাশের সমস্ত পাখীর ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবে| তারা পৃথিবীর সমস্ত বড় জানোয়ার আর বুকে হাঁটা সমস্ত ছোট প্রাণীর উপরে কর্তৃত্ত্ব করবে|” 27 তাই ঈশ্বর নিজের মতোই মানুষ সৃষ্টি করলেন| মানুষ হল তাঁর ছাঁচে গড়া জীব| ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করলেন| 28 ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমাদের বহু সন্তানসন্ততি হোক| মানুষে মানুষে পৃথিবী পরিপূর্ণ করো এবং তোমরা পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণের ভার নাও, সমুদ্রে মাছেদের এবং বাতাসে পাখিদের শাসন করো| মাটির ওপর যা কিছু নড়েচড়ে, যাবতীয় প্রাণীকে তোমরা শাসন করো|” 29 ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমাদের শস্যদায়ী সমস্ত গাছ ও সমস্ত ফলদাযী গাছপালা দিচ্ছি| ঐসব গাছ বীজযুক্ত ফল উত্পাদন করে| এই সমস্ত শস্য ও ফল হবে তোমাদের খাদ্য| 30 এবং জানোয়ারদের সমস্ত সবুজ গাছপালা দিচ্ছি| তাদের খাদ্য হবে সবুজ গাছপালা| পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার, আকাশের সমস্ত পাখি এবং মাটির উপরে বুকে হাঁটে য়েসব কীট সবাই ঐ খাদ্য খাবে|” এবং এই সব কিছুই সম্পন্ন হল| 31 ঈশ্বর যা কিছু সৃষ্টি করেছেন সেসব কিছু দেখলেন এবং ঈশ্বর দেখলেন সমস্ত সৃষ্টিই খুব ভাল হয়েছে| সন্ধ্যা হল, তারপর সকাল হল| এভাবে ষষ্ঠ দিন হল|
1 এইভাবে পৃথিবী, আকাশ এবং তাদের আভ্যন্তরীণ যাবতীয় জিনিস সম্পূর্ণ হল| 2 য়ে কাজ ঈশ্বর শুরু করেছিলেন তা শেষ করে সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম নিলেন| 3 সপ্তম দিনটিকে আশীর্বাদ করে ঈশ্বর সেটিকে পবিত্র দিনে পরিণত করলেন| দিনটিকে ঈশ্বর এক বিশেষ দিনে পরিণত করলেন কারণ ঐ দিনটিতে পৃথিবী সৃষ্টির সমস্ত কাজ থেকে তিনি বিশ্রাম নিলেন| 4 এই হল আকাশ ও পৃথিবীর ইতিহাস| ঈশ্বর যখন পৃথিবী ও আকাশ সৃষ্টি করেছিলেন, তখন যা কিছু ঘটেছিল এটা তারই গল্প| 5 পৃথিবীতে তখন কোন গাছপালা ছিল না| মাঠে তখন কিছুই জন্মাতো না| কারণ প্রভু তখনও পৃথিবীতে বৃষ্টি পাঠান নি এবং ক্ষেতে চাষবাস করার জন্য তখন কেউ ছিল না| 6 পৃথিবী থেকে জলউঠে চারপাশের জমিতে ছড়িয়ে পড়ল| 7 তখন প্রভু ঈশ্বর মাটি থেকে ধুলো তুলে নিয়ে একজন মানুষ তৈরী করলেন এবং সেই মানুষের নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবাযু প্রবেশ করালেন এবং মানুষটি জীবন্ত হয়ে উঠল| 8 তখন প্রভু ঈশ্বর পূর্বদিকে একটি বাগান বানালেন আর সেই বাগানটির নাম দিলেন এদন এবং প্রভু ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টি করা মানুষটিকে সেই বাগানে রাখলেন| 9 এবং সেই বাগানে প্রভু ঈশ্বর সবরকমের সুন্দর বৃক্ষ এবং খাদ্যোপযোগী ফল দেয় এমন প্রতিটি বৃক্ষ রোপণ করলেন| বাগানের মাঝখানটিতে প্রভু ঈশ্বর রোপণ করলেন জীবন বৃক্ষটি যা ভাল এবং মন্দ বিষয়ে জ্ঞান দেয়| 10 এদন হতে এক নদী প্রবাহিত হয়ে সেই বাগান জলসিক্ত করল| তারপর সেই নদী বিভক্ত হয়ে চারটি ছোট ছোট ধারায পরিণত হল| 11 প্রথম ধারাটির নাম পীশোন| এই নদী ধারা পুরো হবীলা দেশটিকে ঘিরে প্রবাহিত| 12 (সে দেশে সোনা রয়েছে আর তা উঁচু মানের| এছাড়া এই দেশে গন্ধদ্রব্য, গুগ্গুল আর মূল্যবান গোমেদকমণি পাওয়া যায়|) 13 দ্বিতীয় নদীর নাম গীহোন, এই নদীটি সমস্ত কুশ দেশটিকে ঘিরে প্রবাহিত| 14 তৃতীয় নদীটির নাম হিদ্দেকল| এই নদী অশূরিয়া দেশের পূর্ব দিকে প্রবাহিত| চতুর্থ নদীটির নাম ফরাত্| 15 কৃষিকাজ আর বাগানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে এদন বাগানে রাখলেন| 16 প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে এই আদেশ দিলেন, “বাগানের য়ে কোনও বৃক্ষের ফল তুমি খেতে পারো| 17 কিন্তু য়ে বৃক্ষ ভালো আর মন্দ বিষযে জ্ঞান দেয সেই বৃক্ষের ফল কখনও খেও না| যদি তুমি সেই বৃক্ষের ফল খাও, তোমার মৃত্যু হবে!” 18 তারপরে প্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষের নিঃসঙ্গ থাকা ভালো নয়| আমি ওকে সাহায্য করার জন্যে ওর মত আর একটি মানুষ তৈরী করব|” 19 প্রভু ঈশ্বর পৃথিবীর ওপরে সমস্ত পশু আর আকাশের সমস্ত পাখী তৈরী করবার জন্য মৃত্তিকার ধূলি ব্যবহার করেছিলেন| প্রভু ঈশ্বর ঐ সমস্ত পশুপাখীকে মানুষটির কাছে নিয়ে এলেন আর মানুষটি তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা নাম দিল| 20 মানুষটি সমস্ত গৃহপালিত পশু, আকাশের সমস্ত পাখীর এবং অরণ্যের সমস্ত বন্য প্রাণীর নামকরণ করল| মানুষটি অসংখ্য পশু পাখী দেখল কিন্তু সে তার য়োগ্য সাহায্যকারী কাউকে দেখতে পেল না| 21 তখন প্রভু ঈশ্বর সেই মানুষঢিকে খুব গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করলেন| মানুষটি যখন ঘুমোচ্ছিল তখন প্রভু ঈশ্বর তার পাঁজরের একটা হাড় বের করে নিলেন| তারপর প্রভু ঈশ্বর য়েখান থেকে হাড়টি বের করেছিলেন সেখানটা চামড়া দিয়ে ঢেকে দিলেন| 22 প্রভু ঈশ্বর মানুষটির পাঁজরের সেই হাড় দিয়ে তৈরি করলেন একজন স্ত্রী| তখন সেই স্ত্রীকে প্রভু ঈশ্বর মানুষটির সামনে নিয়ে এলেন| 23 এবং সেই মানুষটি বলল,“অবশেষে আমার সদৃশ একজন হল| আমার পাঁজরা থেকে তার হাড়, আর আমার শরীর থেকে তার দেহ তৈরী হয়েছে| য়েহেতু নর থেকে তার সৃষ্টি হয়েছে, সেহেতু ‘নারী’ বলে এর পরিচয় হবে|” 24 এইজন্য পুরুষ পিতামাতাকে ত্যাগ করে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয় এবং এইভাবে দুজনে এক হয়ে যায়| 25 তখন নরনারী উলঙ্গ ছিল, কিন্তু সেজন্যে তাদের কোন লজ্জাবোধ ছিল না|
1 প্রভু ঈশ্বর যত রকম বন্য প্রাণী সৃষ্টি করেছিলেন সে সবগুলোর মধ্যে সাপ সবচেয়ে চালাক ছিল| সাপ সেই নারীর সঙ্গে একটা চালাকি করতে চাইল| একদিন সাপটা সেই নারীকে জিজ্ঞেস করল, “নারী, ঈশ্বর কি বাগানের কোনও গাছের ফল না খেতে সত্যিই আদেশ দিয়েছেন?” 2 তখন নারী সাপটাকে বলল, “না! ঈশ্বর তা বলেন নি! বাগানের সব গাছগুলো থেকে আমরা ফল খেতে পারি| 3 শুধু একটি গাছ আছে যার ফল কিছুতেই খেতে পারি না| ঈশ্বর আমাদের বলেছিলেন, “বাগানের মাঝখানে য়ে গাছটা আছে, তার ফল কোনমতেই খাবে না| এমন কি ঐ গাছটা ছোঁবেও না - ছুঁলেই মরবে|” 4 কিন্তু সাপটা নারীকে বলল, “না, মরবে না| 5 ঈশ্বর জানেন, যদি তোমরা ঐ গাছের ফল খাও তাহলে তোমাদের ভালো আর মন্দের জ্ঞান হবে| আর তোমরা তখন ঈশ্বরের মত হয়ে যাবে!” 6 সেই নারী দেখল গাছটা সুন্দর এবং এর ফল সুস্বাদু, আর এই ভেবে সে উত্তেজিত হল য়ে ঐ গাছ তাকে জ্ঞান দেবে| তাই নারী গাছটার থেকে ফল নিয়ে খেল| তার স্বামী সেখানেই ছিল, তাই সে স্বামীকেও ফলের একটা টুকরো দিল আর তার স্বামীও সেটা খেল| 7 তখন সেই নারী ও পুরুষ দুজনের মধ্যেই একটা পরিবর্তন ঘটল| য়েন তাদের চোখ খুলে গেল আর তারা সব কিছু অন্যভাবে দেখতে শুরু করল| তারা দেখল তাদের কোনও জামাকাপড় নেই| তারা উলঙ্গ| তাই তারা কযেকটা ডুমুরের পাতা জোগাড় করে সেগুলোকে জুড়ে জুড়ে সেলাই করল এবং সেগুলোকে পোশাক হিসেবে পরল| 8 প্রভু ঈশ্বর বিকেল বেলা বাগানে বেড়াচ্ছিলেন| তাঁর পাযের শব্দ শুনে সেই পুরুষ ও নারী বাগানে গাছগুলির মাঝখানে গিয়ে লুকালো| 9 কিন্তু প্রভু ঈশ্বর পুরুষটিকে ডাকলেন, “তুমি কোথায়?” 10 পুরুষটি বলল, “আপনার পাযের শব্দ শুনে ভয় পেলাম| আমি য়ে উলঙ্গ| তাই আমি লুকিয়ে আছি|” 11 প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে বললেন, “কে বলল য়ে তুমি উলঙ্গ? তোমার লজ্জা করছে কেন? য়ে গাছটার ফল খেতে আমি বারণ করেছিলাম তুমি কি সেই বিশেষ গাছের ফল খেয়েছ?” 12 সেই পুরুষ বলল, “আমার জন্য য়ে নারী আপনি তৈরী করেছিলেন সেই নারী গাছটা থেকে আমায় ফল দিয়েছিল, তাই আমি সেটা খেয়েছি|” 13 তখন প্রভু ঈশ্বর সেই নারীকে বললেন, “তুমি এ কি করেছ?”সেই নারী বলল, “সাপটা আমার সঙ্গে চালাকি করেছে| সাপটা আমায় ভুলিযে দিল আর আমিও ফলটা খেয়ে ফেললাম|” 14 সুতরাং প্রভু ঈশ্বর সাপটাকে বললেন,“তুমি ভীষণ খারাপ কাজ করেছ; তার ফলে তোমার খারাপ হবে| অন্যান্য পশুর চেযে তোমার পক্ষে বেশী খারাপ হবে| সমস্ত জীবন তুমি বুকে হেঁটে চলবে আর মাটির ধুলো খাবে| 15 তোমার এবং নারীর মধ্যে আমি শত্রুতা আনব এবং তার সন্তানসন্ততি এবং তোমার সন্তান সন্ততির মধ্যে এই শত্রুতা বয়ে চলবে| তুমি কামড় দেবে তার সন্তানের পাযে কিন্তু সে তোমার মাথা চূর্ণ করবে|” 16 তারপর প্রভু ঈশ্বর নারীকে বললেন,“তুমি যখন গর্ভবতী হবে, আমি সেই দশাটাকে দুঃসহ করে তুলব, তুমি অসহ্য ব্যথায সন্তানের জন্ম দেবে| তুমি তোমার স্বামীকে আকুলভাবে কামনা করবে কিন্তু সে তোমার উপরে কর্তৃত্ত্ব করবে|” 17 তারপর প্রভু ঈশ্বর পুরুষকে বললেন,“আমি তোমায় ঐ গাছের ফল খেতে বারণ করেছিলাম| তবু তুমি নারীর কথা শুনে নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়েছ| তাই তোমার কারণে আমি এই ভূমিকে শাপ দেব| ভূমি তোমাদের য়ে খাদ্য দেবে তার জন্যে এখন থেকে সারাজীবন তোমায় অতি কঠিন পরিশ্রম করতে হবে| 18 ভূমি তোমার জন্য কাঁটাঝোপ জন্ম দেবে এবং তোমাকে বুনো গাছপালা খেতে হবে| 19 তোমার খাদ্যের জন্যে তুমি কঠোর পরিশ্রম করবে য়ে পর্য্ন্ত না মুখ ঘামে ভরে যায়| তুমি মরণ পর্য্ন্ত পরিশ্রম করবে, তারপর পুনরায় ধূলি হয়ে যাবে| আমি ধুলি থেকে তোমায় সৃষ্টি করেছি এবং যখন তোমার মৃত্যু হবে পুনরায় তুমি ধূলিতে পরিণত হবে|” 20 আদম তার স্ত্রীর নাম রাখল হবা, কারণ সে সমস্ত জীবিত মানুষের জননী হল| 21 প্রভু ঈশ্বর পশুর চামড়া দিয়ে আদম ও হবার জন্য পোশাক বানিয়ে তাদের পরিযে দিলেন| 22 প্রভু ঈশ্বর বললেন, “দেখ, ওরা এখন ভালো আর মন্দ বিষযে জেনে আমাদের মত হয়ে গেছে| এখন মানুষটা জীবনবৃক্ষের ফল পেড়েও খেতে পারে| আর তা যদি খায় তাহলে ওরা চিরজীবি হবে|” 23 সুতরাং প্রভু ঈশ্বর মানুষকে এদন উদ্যান ত্যাগ করতে বাধ্য করলেন| য়ে ভুমি থেকে আদমকে তৈরী করা হয়েছিল, বাধ্য হয়ে সে সেই ভুমিতেই কাজ করতে থাকল| 24 প্রভু ঈশ্বর মানুষকে ঐ উদ্যান থেকে তাড়িয়ে দিলেন| প্রভু করূব দূতদের উদ্যানের প্রবেশ পথে পাহারায় রাখলেন এবং তিনি আগুনের একটা তরবারিকেও সেখানে রাখলেন| জীবনবৃক্ষের কাছে যাবার পথটি পাহারা দেবার জন্য ঐ তরবারিটি চারদিকে জ্বলজ্বল করছিল|
1 আদম ও তার স্ত্রী হবার মধ্যে য়ৌন সম্পর্ক হল| হবা একটি শিশুর জন্ম দিল| শিশুটির নাম রাখা হল কয়িন| হবা বলল, “প্রভুর সহায়তায আমি একটি মানুষের রূপ দিয়েছি|” 2 পরে সে আর একটি শিশু প্রসব করল| এই শিশুটি হল কয়িনের ভাই হেবল| হেবল হল মেষপালক আর কয়িন হল কৃষক| 3 ফসল কাটার সময় প্রভুর জন্যে কয়িন কিছু উপহার নিয়ে এল| কয়িন ক্ষেতে যা ফলিযেছিল তার থেকে কিছু ফসল নিয়ে এল| আর হেবল প্রভুর জন্য তার মেষপাল থেকে বাছাই করা সেরা মেষগুলোর সেরা অংশ নিয়ে এল|প্রভু হেবল ও তার উপহার গ্রহণ করলেন, 4 5 কিন্তু প্রভু কয়িন ও তার উপহার প্রত্যাখ্যান করলেন| এতে কয়িনের ভীষণ দুঃখ আর রাগ হল| 6 প্রভু কয়িনকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি রাগ করছ কেন? তোমার মুখ বিষন্ন কেন? 7 তুমি যদি ভাল কাজ কর, তখন আমি তোমায় গ্রহণ করব| কিন্তু যদি অন্যায় কাজ করো সে পাপ থাকবে তোমার জীবনে| তোমার পাপ তোমাকে আযত্তে রাখতে চায়, কিন্তু তোমাকেই সেই পাপকে আযত্তে রাখতে হবে|” 8 কয়িন তার ভাই হেবলকে বলল, “চলো, মাঠে যাওয়া যাক|” তখন কয়িন আর হেবল বাইরে মাঠে গেল| তখন কয়িন তার ভাই হেবলের উপর ঝাঁপিযে পড়ে তাকে হত্যা করল| 9 পরে প্রভু কয়িনকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার ভাই হেবল কোথায়?”কয়িন বলল, “আমি জানি না| ভাইয়ের উপর নজরদারি করা কি আমার কাজ?” 10 তখন প্রভু বললেন, “তুমি কি করেছ? তোমার ভাইকে তুমি হত্যা করেছ? তার রক্ত মাটির নীচে থেকে আমার উদ্দেশ্যে চিত্কার করছে| 11 তুমি তোমার ভাইকে হত্যা করেছ এবং তোমার হাত থেকে তার রক্ত নেওয়ার জন্যে পৃথিবী বিদীর্ণ হয়েছে| তাই এখন, আমি এই ভূমিকে অভিশাপ দেব| 12 অতীতে, তুমি গাছপালা লাগিয়েছ এবং তোমার গাছপালার ভালই বাড়বৃদ্ধি হয়েছে| কিন্তু এখন তুমি গাছপালা লাগাবে এবং মাটি তোমার গাছপালা বাড়তে আর সাহায্য করবে না| এই পৃথিবীতে তোমার কোনও বাড়ী থাকবে না, তুমি এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ঘুরে ঘুরে বেড়াবে|” 13 তখন কয়িন বলল, “এই শাস্তি আমার পক্ষে খুব বেশী! 14 দেখ, তুমি আমায় নির্বাসনে য়েতে বাধ্য করছ| আমি তোমার কাছেও আসতে পারব না, তোমার সঙ্গে আর আমার দেখাও হবে না| আমার কোনও ঘরবাড়ী থাকবে না| আমি পৃথিবী জুড়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ঘুরে বেড়াতে বাধ্য হব এবং আমায় য়ে দেখবে সেই হত্যা করবে|” 15 তখন প্রভু কয়িনকে বললেন, “না, আমি তা ঘটতে দেব না| তোমায় যদি কেউ হত্যা করে তাহলে তাকে আরও বেশী শাস্তি দেব|” তখন প্রভু কয়িনের গায়ে একটা চিহ্ন দিলেন যাতে কেউ তাকে হত্যা না করে| 16 কয়িন প্রভুর কাছ থেকে চলে এল এবং এদনের পূর্বদিকে নোদ নামক এক দেশে বাস করতে লাগল| 17 কয়িনের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্কের ফলে তার স্ত্রী একটি পুত্রের জন্ম দিল| তার নাম রাখা হল হনোক| কয়িন একটি নগর পত্তন করে তার নামও পুত্রের নামে রাখল হনোক| 18 হনোকের ইরদ নামে একটি পুত্র হল| ইরদের পুত্রের নাম মহূয়ায়েল| আর তার পুত্রের নাম মথুশায়েল| আর তার পুত্রের নাম লেমক| 19 লেমকের দুজন স্ত্রী ছিল| একজনের নাম আদা, আর একজনের নাম সিল্লা| 20 আদার গর্ভে জন্ম হল যাবলের| যারা তাঁবুতে বাস করে এবং পশুপালন করে সেই জাতির জনক হল যুবল| 21 আদার অন্য পুত্রের নাম য়ুবল| তার সন্তানসন্ততি থেকে য়ে জাতির সৃষ্টি হল তারা বীণা ও বাঁশি বাজায| 22 লেমকের অন্য স্ত্রী সিল্লা এক পুত্রের ও এক কন্যার জন্ম দিল| পুত্রের নাম তুবল কয়িন আর কন্যার নাম নয়মা| তুবল কয়িনের সন্তানসন্ততি পিতল ও লোহার কাজে দক্ষ| 23 লেমক তার দুই স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলল,“আদা আর সিল্লা, এদিকে কান দাও| লেমকের স্ত্রীরা, আমার কথা শোনো! একটা লোক আমায় মেরেছিল, তাই তাকে আমি হত্যা করেছি| একজন তরুণ আমায় আঘাত করেছিল, তার বদলে আমি তাকে হত্যা করেছি| 24 কয়িনকে হত্যার শাস্তি ছিল সাত গুণ, লেমককে হত্যার শাস্তি সাতাত্তর গুণ বেশী!” 25 আদমের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্কের ফলে হবা আর একটি পুত্রের জন্ম দিল| তারা তার নাম রাখল শেথ| হবা বলল, “ঈশ্বর আমায় আর একটি পুত্র দিয়েছেন| কয়িন হেবলকে মেরে ফেলল, কিন্তু আমার এখন শেথ আছে|” 26 শেথেরও একটি পুত্র হল| সে তার নাম রাখল ইনোশ| সেই সময় লোকেরা প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে শুরু করল|”
1 এই বই হল আদম পরিবারের বিষয নিয়ে| ঈশ্বর নিজের ছাঁচে মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন| 2 ঈশ্বর মানুষকে পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করেছিলেন| এবং সেই সৃষ্টির দিনে ঈশ্বর আশীর্বাদ করে তাদের নাম দিলেন “আদম|” 3 আদমের যখন 130 বছর বয়স তখন তার আর একটি পুত্র হল| পুত্রটিকে দেখতে হুবহু আদমের মতো| আদম তার নাম রাখলেন শেথ| 4 শেথের জন্মের পর 800 বছর আদম বেঁচ্ছেিলেন| এই সময়ের মধ্যে আদমের আরও পুত্রকন্যা হল| 5 সুতরাং আদম মোট 930 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তারপর তাঁর মৃত্যু হল| 6 শেথের যখন 105 বছর বয়স তখন তাঁর একটি পুত্র হয়| তার নাম রাখা হয় ইনোশ| 7 ইনোশের জন্মের পরে শেথ 807 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে শেথের আরও পুত্রকন্যা হয়| 8 সুতরাং শেথ বেঁচ্ছেিলেন মোট 912 বছর| তারপর তাঁর মৃত্যু হয়| 9 ইনোশের যখন 90 বছর বয়স তখন তাঁর কৈনন নামে একটি পুত্র হয়| 10 কৈননের জন্মের পর ইনোশ 815 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়| 11 সুতরাং ইনোশ মোট 905 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তারপর তাঁর মৃত্যু হয়| 12 কৈননের 70 বছর বয়সে তাঁর মহললেল নামে একটি পুত্র হয়| 13 মহললেলের জন্মের পর কৈনন 840 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে কৈননের আরও পুত্রকন্যা হয়| 14 সুতরাং কৈনন মোট 910 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তারপর তাঁর মৃত্যু হয়| 15 মহললেলের যখন 65 বছর তখন তাঁর য়েরদ নামে একটি পুত্র হয়| 16 য়েরদের জন্মের পর মহললেল 830 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়| 17 সুতরাং মহললেল মোট 895 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তারপর তাঁর মৃত্যু হয়| 18 য়েরদের যখন 162 বছর বয়স তখন তাঁর হনোক নামে একটি পুত্র হয়| 19 হনোকের জন্মের পর য়েরদ 800 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়. 20 সুতরাং য়েরদ মোট 962 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তারপর তাঁর মৃত্যু হয়| 21 হনোকের যখন 65 বছর বয়স তখন মথূশেলহ নামে তাঁর একটি পুত্র হয়| 22 মথূশেলহর জন্মের পর হনোক আরও 300 বছর ঈশ্বরের সঙ্গে পদচারণা করেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়| 23 সুতরাং হনোক মোট 365 বছর বেঁচ্ছেিলেন| 24 একদিন হনোক ঈশ্বরের সঙ্গে পদচারণা করতে করতে অদৃশ্য হয়ে গেলেন| ঈশ্বর তাঁকে নিয়ে নিলেন| 25 মথূশেলহর যখন 187 বছর বয়স তখন তাঁর লেমক নামে একটি পুত্র হয়| 26 লেমকের জন্মের পর মথূশেলহ 782 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়| 27 সুতরাং মথূশেলহ মোট 969 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তারপর তাঁর মৃত্যু হয়| 28 লেমকের যখন 182 বছর বয়স তখন তাঁর একটি পুত্র হল| 29 লেমক পুত্রের নাম রাখলেন নোহ| তিনি বললেন, “ঈশ্বর ভূমিকে অভিশাপ দিয়েছেন বলে কৃষকরূপে আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়| কিন্তু নোহ আমাদের বিশ্রাম দেবে|” 30 নোহের জন্মের পর লেমক 595 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়| 31 সুতরাং লেমক মোট 777 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তারপর তাঁর মৃত্যু হয়| 32 নোহর 500 বছর বয়সে শেম, হাম এবং য়েফত্ নামে তিনটি পুত্র হয়|
1 পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ক্রমশঃ বেড়ে চলল| অনেকের অনেক কন্যা হল| 2 ঈশ্বরের পুত্রেরা দেখল য়ে তারা সুন্দরী| সুতরাং ঈশ্বরের পুত্রেরা যার যাকে পছন্দ সে তাকে বিয়ে করল|এই নারীরা সন্তানের জন্ম দিল| সেই সময় এবং পরবর্তীকালে পৃথিবীতে নেফিলিম জাতীয মানুষরা বাস করত| প্রাচীনকাল থেকেই নেফিলিমরা মহাবীররূপে বিখ্যাত ছিল|তখন প্রভু বললেন, “মানুষ নেহাতই রক্তমাংসের জীব মাত্র| ওদের দ্বারা আমি আমার আত্মাকে চিরকাল পীড়িত হতে দেব না| আমি ওদের 120 বছর করে আযু দেব|” 3 4 5 প্রভু দেখলেন য়ে পৃথিবীতে লোকে শুধু মন্দ কাজই করছে| তিনি দেখলেন য়ে লোক সারাক্ষণ মন্দ জিনিসের কথাই চিন্তা করছে| 6 পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করার জন্যে প্রভুর অনুশোচনা হল এবং তাঁর হৃদয় বেদনায় পূর্ণ হল| 7 তাই তিনি বললেন, “পৃথিবীতে যত মানুষ সৃষ্টি করেছি সবাইকে আমি ধ্বংস করব| প্রত্যেক মানুষ, প্রত্যেক জানোয়ার এবং পৃথিবীর উপরে যা কিছু চলে ফিরে বেড়ায সব কিছুকে আমি ধ্বংস করব| বাতাসে যত পাখী ওড়ে সেগুলোকেও আমি ধ্বংস করব| কেন? কারণ এই সবকিছু সৃষ্টি করেছি বলে আমি দুঃখিত|” 8 পৃথিবীতে শুধু একজন মানুষের প্রতি প্রভু সন্তুষ্ট ছিলেন - সে হল নোহ| 9 এই হল নোহের পরিবারের বৃতান্ত| নোহ তাঁর প্রজন্মের একজন ভাল ও সত্ মানুষ ছিলেন এবং তিনি সর্বদা ঈশ্বরকে অনুসরণ করতেন| 10 নোহের তিন পুত্র ছিল: শেম, হাম আর য়েফত্| 11 ঈশ্বর নীচে পৃথিবীর দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং দেখলেন য়ে মানুষ তা ধ্বংস করেছে| সর্বত্র হিংসাত্মক ক্রিয়াকলাপ| মানুষ দুষ্ট এবং নিষ্ঠুর হয়ে গেছে এবং নিজেদের জীবন নষ্ট করেছে| 12 13 তাই ঈশ্বর নোহকে বললেন, “সমস্ত লোক ক্রোধ আর হিংসা দিয়ে পৃথিবী পরিপূর্ণ করেছে| তাই আমি সমস্ত জীবন্ত প্রাণীদের ধ্বংস করব| পৃথিবী থেকে সব কিছু মুছে ফেলব| 14 গোফর কাঠ দিয়ে একটা নৌকা বানাও| নৌকোর ভেতরে অনেকগুলি কক্ষ তৈরী করবে এবং কাঠ সংরক্ষণের জন্য বাইরে আলকাতরা লাগাবে| 15 “নৌকোটা 300 হাত লম্বা, 50 হাত চওড়া আর 30 হাত উঁচু করে তৈরী করবে| 16 ছাদের থেকে প্রায় 18 ইঞ্চি নীচে একটা জানালা তৈরী করবে| নৌকোর পাশের দিকে একটা দরজা তৈরী করবে| উপরের তলা, মাঝের তলা আর নীচের তলা - এইভাবে নৌকোর তিনটে তলা থাকবে| 17 “এবার যা বলছি, মন দিয়ে শোন| পৃথিবীতে আমি এক মহাপ্লাবন ঘটাবো| আকাশের নীচের যত জীবন্ত প্রাণী আছে, সব ধ্বংস করবো| পৃথিবীর সমস্ত কিছুর মৃত্যু হবে| 18 কিন্তু তোমার সঙ্গে আমার একটা বিশেষ চুক্তি হবে| তুমি, তোমার স্ত্রী, তোমার পুত্রেরা, তোমার পুত্রবধূরা - তোমরা সবাই ঐ নৌকোতে উঠবে| 19 আর পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর থেকে তুমি একটি করে পুরুষ আর একটি করে স্ত্রী বেছে নেবে| তুমি অবশ্যই তাদের নৌকোতে তুলে নেবে এবং তোমাদের সঙ্গে তাদেরও বাঁচিয়ে রাখবে| 20 সমস্ত রকম পাখীর এক জোড়া, সমস্ত রকম পশুর এক জোড়া এবং মাটিতে বুকে হেঁটে চলে সেরকম সব প্রাণীর এক-এক জোড়া খুঁজে বের করো| পৃথিবীতে যত রকম জীবজন্তু আছে সে সব গুলোর এক জোড়া স্ত্রী পুরুষ জোগাড় করে তোমার নৌকোতে তাদের বাঁচিয়ে রাখবে| 21 তোমাদের জন্য আর অন্যান্য পশুপাখীর জন্য সমস্ত রকম খাবারও অবশ্যই জোগাড় করে রাখবে|” 22 এই সমস্ত কিছুই নোহ করলেন| ঈশ্বর য়েমন আজ্ঞা দিয়েছিলেন, নোহ সবকিছু ঠিক সেইভাবেই পালন করলেন|
1 তখন প্রভু নোহকে বললেন, “তুমি য়ে একজন সত্ মানুষ তা আমি লক্ষ্য করেছি| এমনকি এই য়ুগের দুষ্ট লোকদের মধ্যেও তুমি নিজেকে সত্ রেখেছ| সুতরাং তোমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে তুমি গিয়ে নৌকোতে ওঠো| 2 পৃথিবীর সমস্ত শুচি পশুপাখীরসাত সাত জোড়া এবং অন্যান্য প্রত্যেক পশুর এক এক জোড়া নাও| এই সমস্ত পশুপাখীদের তুমি ঐ নৌকোতে তোমার সঙ্গে নেবে| 3 সমস্ত রকম পাখীর সাতটি করে জোড়া নেবে| এর ফলে পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত পশুপাখী আমি ধ্বংস করে ফেলার পরেও এইসব পশুপাখী সম্পূর্ণভাবে বংশলোপের হাত থেকে রক্ষা পাবে| 4 এখন থেকে ঠিক সাতদিন পরে আমি পৃথিবীতে প্রবল বর্ষণ ঘটাবো| 40 দিন 40 রাত ধরে বৃষ্টি হবে| আমি পৃথিবীর সমস্ত জীবন্ত প্রাণী ধ্বংস করে দেব| যা কিছু আমি সৃষ্টি করেছি, সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে|” 5 প্রভু যা যা করতে বললেন, নোহ সে সমস্তই করলেন| 6 যখন সেই বর্ষন শুরু হল তখন নোহের বয়স 600 বছর| 7 নোহ এবং তাঁর পরিবার মহাপ্লাবন থেকে পরিত্রাণের জন্যে নৌকোতে প্রবেশ করলেন| নোহের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী, তাঁর পুত্রেরা ও পুত্রবধূরা সবাই নৌকোতে ছিলেন| 8 সমস্ত শুচি ও অশুচি পশুপাখী এবং মাটিতে যারা বুকে হেঁটে চলে সেইসব প্রাণী 9 নোহের সঙ্গে নৌকোতে গিয়ে উঠল| ঈশ্বর য়েমনটি আদেশ করেছিলেন ঠিক তেমনভাবে স্ত্রী ও পুরুষে জুটি বেঁধে সমস্ত পশুপাখী নৌকোতে চড়লে, 10 সাত দিন পরে শুরু হল প্লাবন| পৃথিবীতে শুরু হলো বর্ষা| 11 নোহর 600তম বছরের দ্বিতীয় মাসের 17তম দিনে সমস্ত ভূগর্ভস্থ প্রস্রবণ ফেটে বেরিয়ে এল, মাটি থেকে জল বইতে শুরু করল| ঐদিন মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল, বাঁধ ভেঙে গেল এবং সমস্ত পৃথিবী জলপ্লাবিত হলো| সেই একই দিনে প্রচণ্ড বেগে বৃষ্টিপাত শুরু হল য়েন আকাশের সমস্ত জানালা খুলে গেল| 40 দিন 40 রাত ধরে সমানে বৃষ্টি হলো| সেই দিনটিতেই নোহ ও তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের তিন পুত্র শেম, হাম, য়েফত্ আর তাদের তিন স্ত্রী সকলেই নৌকোয প্রবেশ করল| 12 13 14 ঐ সব মানুষ আর পৃথিবীর যাবতীয় পশুপাখী নৌকোর মধ্যে আশ্রয় নিলো| সব রকমের গৃহপালিত জন্তু এবং পৃথিবীতে যতরকমের পশুপাখী চলে ফিরে আর উড়ে বেড়ায সবাই নৌকোর ভেতরে নিরাপদে থাকলো| 15 সমস্ত জন্তু জানোয়ার, পাখী ইত্যাদি নোহর সঙ্গে নৌকোতে জোড়ায় জোড়ায় থাকল| 16 ঈশ্বর য়েমন আদেশ দিয়েছিলেন, নোহ সেই অনুসারে পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণীর এক এক জোড়া নৌকোতে তুললে, প্রভু বাইরে থেকে নৌকোর দরজা বন্ধ করে দিলেন| 17 পৃথিবীতে 40 দিন ধরে বন্যা চলল| জলের মাত্রা ক্রমশঃ উঁচু হতে লাগল আর সেই নৌকো মাটি ছেড়ে জলের উপরে ভাসতে থাকলো| 18 জল বাড়তেই থাকল আর নৌকো মাটি ছেড়ে অনেক উঁচুতে ভাসতে লাগল| 19 জল এত বাড়লো য়ে সবচেয়ে উঁচু পর্বতগুলো পর্য্ন্ত ডুবে গেল| 20 পর্বতগুলোর মাথা ছাপিযে জল বাড়তে লাগল| সবচেয়ে উঁচু পর্বতের উপরেও 20 ফুটের বেশী জল দাঁড়াল| 21 পৃথিবীর সমস্ত জীব মারা গেল| প্রতিটি পুরুষ ও স্ত্রী এবং পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার মারা পড়ল| সমস্ত বন্য প্রাণী, সরীসৃপ ধ্বংস হয়ে গেল| স্থলচর যত প্রাণী শ্বাস প্রশ্বাস নেয় তারাও মারা গেল| 22 23 এইভাবে ঈশ্বর পৃথিবীকে একেবারে পরিষ্কার করে ফেললেন| পৃথিবীর সমস্ত জীবন্ত অস্তিত্ব ধ্বংস করে ফেললেন| সমস্ত মানুষ, সমস্ত জন্তু জানোয়ার, বুকে হাঁটা সমস্ত প্রাণী এবং সমস্ত পাখী এই সব কিছুই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল| নোহ আর নোহের পরিবার পরিজন এবং নৌকোতে আশ্রয় পাওয়া পশুপাখী - কেবলমাত্র এইসব প্রাণের অবশেষ পৃথিবীতে বেঁচে থাকলো| 24 একটানা 150 দিন পৃথিবী বিপুল জলরাশিতে ডুবে থাকলো|
1 কিন্তু ঈশ্বর নোহর কথা ভুলে যান নি| নোহ এবং নোহের নৌকোয আশ্রয় পাওয়া সব জীবজন্তুর কথাই ঈশ্বরের মনে ছিল| পৃথিবীর উপর দিয়ে তিনি এক বাতাস বইয়ে দিলেন| এবং সমস্ত জল সরে য়েতে শুরু করল| 2 আকাশ থেকে অবিশ্রান্ত বর্ষন বন্ধ হল| ভূগর্ভস্ত প্রস্রবণগুলি থেকে জল নির্গত হওয়া বন্ধ হল| 3 পৃথিবীর উপর থেকে জলরাশি ক্রমশঃ নেমে য়েতে লাগল| 150 দিন পরে জল এতটাই নেমে গেল য়ে নৌকোটা আবার মাটি স্পর্শ করলো| নৌকা গিয়ে ঠেকল অরারটের একটা পর্বতে| সেটা ছিল সপ্তম মাসের 17 তম দিন| 4 5 জল ক্রমাগত নেমে য়েতে লাগলো এবং দশম মাসের প্রথম দিনে পর্বতের মাথাগুলো জলের উপরে জেগে উঠলো| 6 আরও 40 দিন পরে নোহ নিজের তৈরী নৌকোর জানালাটা খুললেন| 7 তারপর তিনি নৌকো থেকে একটা দাঁড়কাক উড়িয়ে দিলেন| এবং যতদিন না জল নেমে গিয়ে শুকনো ডাঙা দেখা দিল ততদিন সেই দাঁড়কাকটা নৌকো থেকে উড়ে গিয়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে বেড়াতে লাগল| 8 নোহ একটা পায়রাও উড়িয়ে দিলেন| পায়রাটা শুকনো ডাঙা খুঁজে পায় কিনা তা নোহ জানতে চাইছিলেন| তিনি জানতে চাইছিলেন য়ে পৃথিবী এখনও জলে ডুবে আছে কি না| 9 পৃথিবী তখনও জলে ঢাকা, তাই পায়রাটা বসার জায়গা না পেয়ে ফিরে এল নৌকোতে| নোহ হাত বাড়িযে পায়রাটাকে ধরে নৌকোর ভিতরে টেনে নিলেন| 10 সাত দিন পরে নোহ আবার পায়রাটা উড়িয়ে দিলেন| 11 এবং সেদিন বিকেলে পায়রাটা জলপাইয়ের একটা কচি পাতা ঠোঁটে নিয়ে ফিরে এল| পৃথিবীতে য়ে আবার ডাঙা জেগে উঠতে শুরু করেছে ঐ কচি পাতাটি তারই চিহ্ন| 12 সাত দিন পরে নোহ আবার পায়রাটা উড়িয়ে দিলেন| কিন্তু এবার পায়রাটা আর ফিরে এল না| 13 তারপর নোহ নৌকোর দরজাটা খুললেন| নোহ তাকিযে শুকনো ডাঙা দেখতে পেলেন| সেটা ছিল বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন| নোহর বয়স তখন 601 বছর| 14 দ্বিতীয় মাসের 27তম দিনের মধ্যে ডাঙা সম্পূর্ণ শুকনো হয়ে গেল| 15 ঈশ্বর তখন নোহকে বললেন, 16 “নৌকো থেকে নেমে এস| তুমি, তোমার স্ত্রী, তোমার পুত্ররা আর তাদের বধূরা নৌকো থেকে এবার বাইরে যাও| 17 তোমাদের সঙ্গে নৌকোর সমস্ত পশুপাখী নিয়ে বাইরে যাও| সমস্ত পাখী, সমস্ত জন্তু জানোয়ার এবং বুকে হেঁটে চলে এরকম সমস্ত প্রাণী নিয়ে বাইরে এসো| ঐসব পশুপাখী আরও অনেক পশুপাখীর জন্ম দেবে আর সে সবে আবার পৃথিবী ভরে যাবে|” 18 অতএব নোহ, তাঁর স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূদের নিয়ে নৌকো থেকে মাটিতে নামলেন| 19 সমস্ত জন্তু জানোয়ার, সমস্ত প্রাণী যা বুকে হাঁটে এবং সমস্ত পাখী নৌকো ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এল| নৌকো ছেড়ে এল জোড়ায জোড়ায সমস্ত পশুপাখী| 20 তখন নোহ প্রভুর জন্যে একটা বেদী তৈরী করলেন| নোহ কয়েকটি শুচি পশু ও কয়েকটি শুচি পাখী ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে সেই বেদীতে হোম করলেন| 21 প্রভু হোমের গন্ধ আঘ্রাণ করে প্রীত হলেন| আপন মনে প্রভু বললেন, “মানুষকে শাস্তি দেওয়ার জন্যে আমি আর কখনও মৃত্তিকাকে অভিশাপ দেব না| কারণ বাল্যকাল থেকে মানুষের স্বভাব মন্দ| সুতরাং এইমাত্র আমি য়েমনটি করেছিলাম আর কখনও সেভাবে পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীদের ধ্বংস করব না| 22 যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন শস্যের চারা রোপণের আর ফসল কাটার নির্দিষ্ট সময় থাকবে| ততদিন ঠাণ্ডা, গরম, শীতকাল আর গ্রীষ্মকাল এবং দিন, রাত হয়ে চলবে|”
1 ঈশ্বর নোহ আর তাঁর পুত্রদের আশীর্বাদ করলেন| ঈশ্বর তাদের বললেন, “তোমাদের বহু সন্তান হোক| তোমাদের উত্তরপুরুষরা পৃথিবী পরিপূর্ণ করুক| 2 পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার, আকাশের সমস্ত পাখী, যতরকমের সরীসৃপ জাতীয জীব যারা মাটির উপরে বুকে হেঁটে চলে এবং জলের সমস্ত মাছ প্রত্যেকে তোমাদের ভয় করবে| সমস্ত প্রাণীগণই তোমাদের শাসনে থাকবে| 3 অতীতে তোমাদের খাদ্য হিসেবে আমি শুধু সবুজ উদ্ভিদ তোমাদের দিয়েছিলাম| এখন থেকে সমস্ত জানোয়ারই তোমাদের খাদ্য হবে| পৃথিবীর সমস্ত কিছুই আমি তোমাদের দিচ্ছি| সব কিছুই তোমাদের| 4 য়ে মাংসের মধ্যে সেই প্রাণীর প্রাণ (রক্ত) আছে সেই মাংস কখনও খাবে না| 5 আমি তোমাদের জীবনের জন্য তোমাদের রক্ত দাবি করব| অর্থাত্ যদি কোনও জানোয়ার কোনও মানুষকে হত্যা করে তাহলে আমি তার প্রাণ দাবী করব এবং যদি কোন মানুষ অন্য কোনও মানুষের প্রাণ নেয় আমি তারও প্রাণ দাবী করব| 6 “ঈশ্বর মানুষকে আপন ছাঁচে তৈরী করেছেন| তাই য়ে মানুষ অপর মানুষকে হত্যা করে তার অবশ্যই মানুষের হাতে মৃত্যু হবে| 7 “নোহ, তুমি ও তোমার পুত্রদের অনেক সন্তানসন্ততি হোক| আপন পরিজনদের দিয়ে পৃথিবী পরিপূর্ণ করো|” 8 তারপর ঈশ্বর নোহ ও তাঁর পুত্রদের বললেন, 9 “আমি এখন তোমাকে এবং তোমার লোকদের, যারা তোমার পরে বর্ত্তমান থাকবে তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি| 10 নৌকোর মধ্যে থেকে তোমার সঙ্গে য়েসব পাখী, য়েসব গৃহপালিত জন্তু এবং অন্যান্য য়েসব জানোয়ার নেমেছে তাদের সবাইকে আমার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি| পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর কাছে আমার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি| 11 তোমাদের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি হল এই: পৃথিবীর সমস্ত প্রাণ বন্যা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল| কিন্তু এমন ঘটনা আর কখনও হবে না| কোনও বন্যা আর কখনও পৃথিবী থেকে সমস্ত প্রাণ নিশ্চিহ্ন করবে না|” 12 ঈশ্বর আরও বললেন, “আর আমি য়ে এই প্রতিশ্রুতি দিলাম এর প্রমাণস্বরূপ আমি তোমাদের একটা জিনিস দেব| এই প্রমাণ থেকে সকলে জানবে য়ে আমি তোমার সঙ্গে এবং পৃথিবীর সমস্ত জীবন্ত জিনিসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ| এই চুক্তি চিরকালীন| 13 প্রমাণটা এই য়ে, আকাশে আমি মেঘে মেঘে সাতরঙের এক রঙধনু বানিয়েছি| ঐ রঙধনুই হল আমার আর পৃথিবীর মধ্যে চুক্তির চিহ্ন| 14 আমি যখন পৃথিবীর উপরে মেঘমালা ছড়িয়ে দেব, তখন তোমরা মেঘে ঐ রঙধনু দেখতে পাবে| 15 আর আমি যখন ঐ রঙধনু দেখতে পাবো, আমার তখন তোমার ও পৃথিবীর যাবতীয় জীবন্ত জিনিসের সঙ্গে চুক্তির কথা মনে পড়বে| এই চুক্তির মর্ম হল য়ে পৃথিবীতে আর কখনও সর্ব বিধ্বংসী এমন বন্যা হবে না| 16 আমি যখন মেঘের মধ্যে ঐ রঙধনু দেখবো তখন চিরকালের জন্য সম্পন্ন ঐ চুক্তির কথা আমার মনে পড়ে যাবে| আমার আর পৃথিবীর প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যে ঐ চুক্তির কথা আমি মনে রাখব|” 17 তারপর প্রভু নোহকে বললেন, “পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর সঙ্গে আমি য়ে একটা চুক্তি করেছি ঐ রঙধনুই তার প্রমাণ|” 18 নোহর সঙ্গে তাঁর পুত্রেরাও নৌকো থেকে বেরিয়ে এলো| তাদের নাম শেম, হাম আর য়েফত্| (হামই কনানের পিতা|) 19 ঐ তিনজন হল নোহর পুত্র| ঐ তিন পুত্র হতেই পৃথিবীর সমস্ত মানুষ এসেছে| 20 মাটিতে নেমে নোহ কৃষিকাজ শুরু করলেন| একটা জমিতে তিনি দ্রাক্ষা চাষ করলেন| 21 সেই দ্রাক্ষা থেকে নোহ দ্রাক্ষারস বানালেন, তারপর সেই দ্রাক্ষারস পান করে নেশায চুর হয়ে তাঁবুর ভিতরে শুয়ে পড়লেন| নোহর গায়ে আবরণ থাকল না| 22 কনানের পিতা হাম সেই উলঙ্গ অবস্থায় নিজের পিতাকে দেখে ফেললো| তাঁবুর বাইরে গিয়ে সে কথা ভাইদের বলল| 23 তখন শেম আর য়েফত্ এক খণ্ড বস্ত্র নিয়ে নিজেদের পিঠের উপর ছড়িয়ে নিলো| তারপর পিছন দিকে হেঁটে হেঁটে তাঁবুর ভিতরে ঢুকে ঐ বস্ত্রখণ্ড দিয়ে পিতাকে ঢেকে দিল| এইভাবে, তাদের মুখ বিপরীত দিকে ছিল বলে তাদের পিতার নগ্নতা তারা দেখেনি| 24 দ্রাক্ষারসের প্রভাবে নোহ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন| তিনি যখন ঘুম থেকে উঠলেন তখন জানতে পারলেন তাঁর তরুণ পুত্র হাম তাঁর প্রতি কি করেছে| 25 তখন নোহ বললেন,“অভিশাপ কনানের উপরে পড়ুক| তাকে চিরকাল তার ভাইদের দাস হয়ে থাকতে হবে|” 26 নোহ আরও বললেন,“শেমের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর! কনান য়েন শেমের দাস হয়| 27 ঈশ্বর য়েফত্কে আরও জমি দিন, ঈশ্বর শেমের তাঁবুতে অবস্থান করুন এবং কনান তাদের দাস হউক|” 28 বন্যার পরে নোহ 350 বছর বেঁচ্ছেিলেন| 29 নোহ বেঁচ্ছেিলেন মোট 950 বছর; তারপর তাঁর মৃত্যু হয়|
1 শেম, হাম ও য়েফত্ এই তিনজন ছিল নোহর পুত্র| বন্যার পরে এই তিনজনের আরও বহু সন্তান সন্ততির জন্ম হল| শেম, হাম ও য়েফতের উত্তরপুরুষরা: 2 য়েফতের পুত্রগণ হল: গোমর, মাগোগ, মাদয়, য়বন, তূবল, মেশক এবং তীরস| 3 গোমরের পুত্রগণ হল: অস্কিনস, রীফত্ এবং তোগর্ম| 4 যবনের পুত্রগণ হল: ইলীশা, তর্শীশ, কিত্তীম এবং দোদানীম| 5 ভূমধ্যসাগর অঞ্চলে য়ে সকল মানুষের বাস তারা সকলেই য়েফতের সন্তানসন্ততি| প্রত্যেক পুত্রের নিজস্ব ভূমি ছিল| সমস্ত পরিবারই বৃদ্ধি পেতে পেতে একটি জাতিতে পরিণত হয়| প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ভাষা ছিল| 6 হামের পুত্রগণ হল: কূশ, মিশর, পূট এবং কনান| 7 কূশের পুত্রগণ হল: সবা, হবীলা, সপ্তা, রযমা এবং সপ্তক|রযমার পুত্রগণ হল: শিবা এবং দদান| 8 নিম্রোদ নামেও কুশের এক পুত্র ছিল| কালক্রমে নিম্রোদ দারুন শক্তিমান পুরুষে পরিণত হয়| 9 প্রভুর সম্মুখে নিম্রোদ একজন বড় শিকারী হয়ে উঠল| সেজন্য তার সঙ্গে অন্যান্য লোকদের তুলনা করে সকলে বলতো, “ঐ মানুষটি নিম্রোদের মত, এমন কি প্রভুর সামনেও দারুণ শিকারী|” 10 নিম্রোদের রাজত্ব বাবিল থেকে শিনিযর দেশে এরক অক্কদ এবং কল্নী পর্য্ন্ত বিস্তৃত হয়েছিল| 11 নিম্রোদ অশূরেও গিয়েছিল| নিম্রোদ অশূর দেশে নীনবী, রহোবোত্-পুরী, কেলহ এবং 12 রেষণ (নীনবী এবং কেলহের মধ্যবর্তী ভুভাগে রেষণ মহানগরের পত্তন হয়|) 13 মিশর ছিল লূদীয়, অনামীয়, লহাবীয়, নপ্তুহীয়, 14 পথ্রোষীয়, কস্লূহীয় আর কপ্তোরীয় অঞ্চলগুলির অধিবাসীদের জনক| (পলেষ্টীয়রা কস্লূহীয় দেশ থেকে এসেছিল|) 15 কনান ছিল সীদোনের পিতা| সীদোন কনানের প্রথম সন্তান| কনান হিত্তীয়দের পূর্বপুরুষ ‘হেতেরও’ পিতা ছিলেন| হেত্ থেকে হিত্তীয়দের উদ্ভব| 16 কনান ছিলেন যিবুষীয়, ইমোরীয় জনগোষ্ঠী, গির্গাশীয়দের পিতা| 17 হিব্বীয় জনগোষ্ঠী, অর্কীয় জনগোষ্ঠী, সীনীয় জনগোষ্ঠী, 18 অর্বদীয় জনগোষ্ঠী, সমারীয় জনগোষ্ঠী এবং হমাতীয় জনগোষ্ঠী কনান থেকে উদ্ভুত হয়| পরে কনানীয় গোষ্ঠীগুলি পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ল| 19 কনানীয়দের দেশ উত্তরে সীদোন থেকে দক্ষিণে গরার পর্য্ন্ত, পশ্চিমে ঘসা থেকে পূর্বে সদোম ও ঘমোরা পর্য্ন্ত এবং অদ্মা ও সবোযীর থেকে লাশা পর্য্ন্ত বিস্তৃত ছিল| 20 এই সমস্ত মানুষই ছিল হামের উত্তরপুরুষ| এইসব পরিবারগুলির নিজস্ব ভাষা ও নিজস্ব দেশ ছিল| তারা ক্রমে ক্রমে পৃথক পৃথক জাতি হয়ে উঠল| 21 য়েফতের বড় ভাই ছিল শেম| শেমের একজন উত্তরপুরুষ হল এবর এবং এবর সমস্ত হিব্রু জনগোষ্ঠীর জনক রূপে পরিচিত| 22 শেমের পুত্ররা হল: এলম, অশূর, অর্ফক্ষদ, লূদ এবং অরাম| 23 অরামের পুত্রেরা হল: উষ, হূল, গোখর এবং মশ| 24 অর্ফক্ষদের পুত্র শেলহ, শেলহের পুত্র এবর| 25 এবরের দুই পুত্র| এক পুত্রের নাম পেলগ| তার আমলে পৃথিবী বিভক্ত হয় বলে তার ঐ নাম হয়| অন্য পুত্রের নাম য়ক্তন| 26 য়ক্তনের পুত্রেরা হল: অল্মোদদ, শেলফ, হত্সমবিত্, য়েরহ, 27 হদোরাম, উবল, দিক্ল, 28 ওবল, অবীমায়েল, শিবা, 29 ওফীর, হবীলা এবং য়োবব| এরা সবাই ছিল যক্তনের পুত্র| 30 পূর্ব দিকেমেষা এবং পার্বত্য দেশের মধ্যবর্তী ভুভাগে তারা বাস করত| মেষা ছিল সফার দেশের দিকে| 31 এরা সবাই ছিল শেমের পরিবারের অন্তর্গত| পরিবার, ভাষা, দেশ ও জাতি অনুসারেই তাদের সাজানো হয়েছে| 32 এই সবগুলোই নোহের পুত্রদের পরিবার| পরিবারগুলি তালিকা তাদের জাতি অনুসারে প্রস্তুত করা হয়েছে| প্লাবনের পরে এই পরিবারগুলি থেকেই সারা পৃথিবীতে মনুষ্য সমাজের বিস্তার হয়েছে|
1 প্লাবনের পরে সমস্ত পৃথিবী এক ভাষাতে কথা বলত| সমস্ত মানুষ একই শব্দগুলি ব্যবহার করত| 2 সেই লোকেরা পূর্ব দিক থেকে ঘুরতে ঘুরতে শিনিয়র দেশে এসে সমতল ভূমি পেল| তারা সেখানে বসবাস শুরু করল| 3 তারা বলল, “আমরা মাটি দিয়ে ইঁট তৈরী করব, তারপর আরও শক্ত করার জন্যে ইঁটগুলো পোড়াব|” তখন মানুষ পাথরের বদলে ইঁট দিয়ে বাড়ী তৈরী করল| আর গাঁথনি শক্ত করার জন্যে সিমেন্টের বদলে আলকাতরা ব্যবহার করল| 4 তারা বলল, “এস আমরা আমাদের জন্যে এক বড় শহর বানাই| আর এমন একটি উঁচু স্তম্ভ বানাই যা আকাশ স্পর্শ করবে| তাহলে আমরা বিখ্যাত হব এবং এটা আমাদের এক সঙ্গে ধরে রাখবে| সারা পৃথিবীতে আমরা ছড়িয়ে থাকব না|” 5 সেই শহর আর সেই আকাশস্পর্শী স্তম্ভ দেখতে প্রভু পৃথিবীতে নেমে এলেন| মানুষ কি কি তৈরী করেছে সেসব প্রভু দেখলেন| 6 প্রভু বললেন, “সব মানুষ একই ভাষাতে কথা বলছে| আর দেখতে পাচ্ছি য়ে এসব কাজ করার জন্যে তারা ঐক্যবদ্ধ| তারা কি করতে পারে এ তো সবে তার শুরু| শীঘ্রই তারা যা চায় তাই করতে পারবে| 7 তাহলে এস আমরা নীচে গিয়ে ওদের এক ভাষাকে নানারকম ভাষা করে দিই| তাহলে তারা পরস্পরকে বুঝতে পারবে না|” 8 সুতরাং প্রভু সমস্ত লোকেদের সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিলেন| ফলে মানুষ আর সেই শহর তৈরির কাজ শেষ করতে পারল না| 9 এই সেই স্থান যেখানে প্রভু সমস্ত পৃথিবীর এক ভাষাকে অনেক ভাষাতে বিভ্রান্ত করলেন| তাই এই স্থানটির নাম হলো বাবিল| এইভাবে প্রভু তাঁদের সেই স্থান থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিলেন| 10 এটা হল শেমের পরিবারের কাহিনী| প্লাবনের দু বছর পরে, যখন শেমের বয়স 100 বছর তখন তার অর্ফক্ষদ নামে পুত্রটির জন্ম হয়| 11 তারপরে শেম 500 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তাঁর আরও পুত্রকন্যা ছিল| 12 অর্ফক্ষদের 35 বছর বয়সে তাঁর পুত্র শেলহের জন্ম হয়| 13 শেলহের জন্মের পরে অর্ফক্ষদ 400 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়| 14 যখন শেলহের বয়স 30 বছর তখন এবর নামে তাঁর এক পুত্র হয়| 15 এবরের জন্মের পরে শেলহ 400 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়| 16 এবরের যখন 34 বছর বয়স তখ পেলগ নামে তাঁর এক পুত্র হয়| 17 পেলগের জন্মের পর এবর 430 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়| 18 পেলগের যখন 30 বছর বয়স তখন রিযু নামে তাঁর এক পুত্র হয়| 19 রিযুর জন্মের পরে পেলগ আরও 200 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়েছিল| 20 রিযুর যখন 32 বছর বয়স তখন সরূগ নামে তাঁর এক পুত্র হয়| 21 সরূগের জন্মের পরে রিযু 207 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়েছিল| 22 সরূগের যখন 30 বছর বয়স তখন নাহোর নামে তাঁর এক পুত্র হয়| 23 নাহোরের জন্মের পরে সরূগ 200 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়েছিল| 24 নাহোরের যখন 29 বছর বয়স তখন তেরহ নামে তাঁর এক পুত্র হয়| 25 তেরহের জন্মের পরে নাহোর আরও 119 বছর বেঁচ্ছেিলেন| ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়েছিল| 26 তেরহ 70 বছর বয়সে যথাক্রমে অব্রাম, নাহোর ও হারণ নামে পুত্রদের জন্ম দিলেন| 27 এটা হল তেরহের পরিবারের কাহিনী| তেরহ হল অব্রাম, নাহোর ও হারণের জনক| হারণ ছিল লোটের জনক| 28 কিন্তু তেরহের জীবদ্দশাতেই আপন জন্মস্থান কলদীয় দেশের উরে হারণের মৃত্যু হয়| 29 অব্রাম ও নাহোর দুজনেই বিবাহ করেন| অব্রামের স্ত্রীর নাম সারী আর নাহোরের স্ত্রীর নাম মিল্কা| মিল্কা ছিল হারণের কন্যা| হারণ ছিলেন মিল্কা ও য়িষ্কার জনক| 30 সারী বন্ধ্যা ছিল তাই তাঁর কোনও সন্তান হয় নি| 31 তেরহ তাঁর পরিবার নিয়ে কলদীয় দেশের উর পরিত্যাগ করলেন| তাঁদের পরিকল্পনা ছিল কনান দেশে যাওয়ার| তেরহ তাঁর পুত্র অব্রাম, তাঁর পৌত্র লোট এবং পুত্রবধূ সারীকে সঙ্গে নিলেন| তাঁরা হারণ নামে একটা শহরে পৌঁছে সেখানেই বাস করার সিদ্ধান্ত নিলেন| 32 তেরহ 205 বছর বেঁচ্ছেিলেন এবং হারণেই তাঁর মৃত্যু হয়|
1 প্রভু অব্রামকে বললেন, “তুমি এই দেশ, নিজের জাতিকুটুম্ব এবং পিতার পরিবার ত্যাগ করে, আমি য়ে দেশের পথ দেখাব সেই দেশে চল| 2 তোমা হতে আমি এক মহাজাতি উত্পন্ন করব| তোমাকে আশীষ দেব এবং তুমি বিখ্যাত হবে| অন্যকে আশীর্বাদ জানাতে লোকে তোমার নাম নেবে| 3 যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে, সেই লোকেদের আমি আশীর্বাদ করব এবং যারা তোমাকে অভিশাপ দেবে, সেই লোকেদের আমি অভিশাপ দেব| তোমার মাধ্যমে আমি পৃথিবীর সব লোকেদের আশীর্বাদ করব|” 4 অতঃপর অব্রাম প্রভুর আজ্ঞা পালন করলেন| তিনি হারণ ত্যাগ করলেন এবং লোট তাঁর সঙ্গে গেলেন| অব্রামের বয়স তখন 75 বছর| 5 অব্রাম সঙ্গে নিলেন স্ত্রী সারী, ভ্রাতুষ্পুত্র লোট এবং হারণে তাঁদের যা কিছু ছিল সে সবই নিয়ে গেলেন| হারণে অব্রামের য়েসব দাসদাসী ছিল তাদেরও তিনি সঙ্গে নিলেন| দলবল সমেত হারণ ত্যাগ করে অব্রাম কনান দেশে যাত্রা করলেন| 6 অব্রাম কনান দেশের মধ্য দিয়ে শিখিম শহরে গেলেন এবং তারপরে মোরিতে এক বিশাল গাছের কাছে গেলেন| সেই সময় কনানীযরা সেখানে বাস করতো| 7 প্রভু অব্রামের সকাশে আত্মপ্রকাশ করলেন| প্রভু বললেন, “তোমার উত্তরপুরুষদের আমি এই দেশ দেব|”প্রভু যেখানে অব্রামকে দর্শন দিয়েছিলেন সেখানে অব্রাম প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ সম্পাদনের জন্যে পাথরের একটা বেদী নির্মাণ করলেন| 8 তারপর অব্রাম সেই স্থান ত্যাগ করে গেলেন বৈথেলের পূর্বদিকে অবস্থিত পর্বতে এবং সেখানে তাঁর শিবির স্থাপন করলেন| বৈথেল নগর ছিল পশ্চিম দিকে আর অয় ছিল পূর্ব দিকে| সেখানে অব্রাম আর একটি বেদী নির্মাণ করলেন এবং প্রভুর উপাসনা করলেন| 9 অতঃপর তিনি পুনরায় তাঁর যাত্রা শুরু করলেন| তিনি নেগেভের দিকে অগ্রসর হলেন| 10 তখন দেশটা ছিল খুব শুষ্ক| অনাবৃষ্টির জন্যে কোনও শস্য উত্পাদন সম্ভব ছিল না| তাই অব্রাম বসবাসের জন্য আরও দক্ষিণে মিশরে গেলেন| 11 তিনি খেয়াল করলেন য়ে তাঁর স্ত্রী সারী কত সুন্দরী| তাই মিশরে প্রবেশের ঠিক আগে সারীকে বললেন, “আমি জানি তুমি সুন্দরী| 12 মিশরীয পুরুষরা তোমায় দেখবে| তারা বলবে, ‘এই মহিলা ঐ লোকটার স্ত্রী|’ তারা তখন তোমাকে পাওয়ার জন্যে আমায় মেরে ফেলবে| 13 তাই সবাইকে বলবে য়ে তুমি আমার বোন| তাহলে তারা আর আমায় হত্যা করবে না| তারা আমায় তোমার ভাই ভাববে, আমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবে| এইভাবে তুমি আমার প্রাণ বাঁচাবে|” 14 তখন অব্রাম মিশরে গেলেন| মিশরীয পুরুষরা দেখল য়ে সারী কত সুন্দরী| 15 মিশরের নেতারা কেউ কেউ তাঁকে দেখলেন| সারী য়ে কত সুন্দরী সে কথা তাঁরা বয়ং ফরৌণের কানে তুললেন| তাঁরা সারীকে ফরৌণের প্রাসাদে নিয়ে গেলেন| 16 অব্রামকে সারীর ভাই মনে করে ফরৌণ অব্রামের প্রতি সদয় ব্যবহার করলেন| অব্রামকে ফরৌণ মেষ, গবাদি পশু এবং বোঝা বইবার জন্য গাধা দিলেন| সেই সঙ্গে দাসদাসী এবং উটও পেলেন অব্রাম| 17 আর ফরৌণ অব্রামের স্ত্রীকে নিলেন| এই কারণে ফরৌণ এবং তাঁর প্রাসাদের সব লোকেদের প্রভু ভয়ঙ্কর অসুখ দিলেন| 18 তখন ফরৌণ অব্রামকে ডেকে বললেন, “তুমি আমার প্রতি খুব অন্যায় করেছ! সারী য়ে তোমার স্ত্রী সে কথা আমায় বলো নি কেন? 19 তুমি কেন বলেছিলে য়ে সারী তোমার বোন? তোমার বোন মনে করে আমি ওকে আমার স্ত্রী করব বলে এনেছিলাম| কিন্তু এখন তোমায় তোমার স্ত্রী ফেরত দিচ্ছি| ওকে নিয়ে তুমি চলে যাও!” 20 তারপর ফরৌণ তাঁর লোকজনদের আদেশ করলেন, “অব্রামকে মিশরের বাইরে নিয়ে যাও|” সুতরাং অব্রাম ও তার স্ত্রী সেই দেশ ত্যাগ করলেন| এবং সঙ্গে তাঁদের সমস্ত জিনিসপত্রও নিয়ে গেলেন|
1 অতঃপর অব্রাম মিশর ত্যাগ করলেন| তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের সমস্ত জিনিসপত্র নিয়ে অব্রাম নেগেভের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হলেন| তাঁর সঙ্গে তখন লোটও ছিল| 2 এই সময় অব্রাম খুবই ধনী| তাঁর প্রচুর পশু এবং প্রচুর সোনা ও রূপা ছিল| 3 অব্রাম তাঁর যাত্রা অব্যাহত রাখলেন| নেগেভ ত্যাগ করে তিনি বৈথেলে ফিরে গেলেন| সেখান থেকে বৈথেল নগর আর অয় নগরের মধ্যবর্তী স্থানে গেলেন| এখানেই অব্রাম ও তাঁর পরিবার আগে একবার শিবির স্থাপন করেছিলেন| 4 এই স্থানটিতেই একটি বেদী নির্মাণ করেছিলেন| তাই অব্রাম এই স্থানটিতেই প্রভুর উপাসনা করলেন| 5 এই পর্য়টনের সময় অব্রামের সঙ্গে লোটও ছিল| লোটের অনেক পশু ও তাঁবু ছিল| 6 অব্রাম আর লোটের এত পশু ছিল য়ে তাদের উভয়কে খাদ্য য়োগাবার জন্য সেই দেশ অসমর্থ ছিল| 7 এই সময় কনানীয় এবং পরিষীয় জাতিরাও সে দেশে বাস করত| অব্রামের পশুপালকদের সঙ্গে লোটের পশুপালকদের বিবাদ হতে লাগল| 8 তখন অব্রাম লোটকে বলল, “তোমার আমার মধ্যে কোনও বিবাদ থাকতে পারে না| তোমার লোকেদের সঙ্গে আমার লোকেদের কোন বিবাদ হওয়া উচিত নয়| আমরা সবাই পরস্পরের আপনজন| 9 আমাদের পৃথক হয়ে যাওয়া উচিত| তোমার য়ে জায়গা পছন্দ সেই জায়গাতেই যাও| তুমি বাঁ দিকে গেলে আমি ডান দিকে যাব| যদি তুমি ডান দিকে যাও, আমি বাঁ দিকে যাব| 10 লোট চোখ তুলে দেখল, সামনে বিস্তৃত যর্দন উপত্যকা| লোট দেখল জায়গাটা পর্য়াপ্ত জলে সরস| (এটা প্রভু কর্তৃক সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস করার আগের ঘটনা| তখন সোযর পর্য্ন্ত যর্দন উপত্যকা ছিল প্রভুর উদ্যানের মত| এখানকার মাটি ছিল মিশরের মাটির মত ভাল জাতের মাটি|) 11 তাই লোট যর্দন উপত্যকাতে বাস করবে বলে ঠিক করল| দুজনে পৃথক হয়ে গেল এবং লোট পূর্ব দিকে এগিয়ে চলল| 12 অব্রাম কনানেই থেকে গেলেন এবং লোট উপত্যকার জনপদগুলিতে বাস করতে লাগলেন| লোট উপত্যকার সূদুর দক্ষিণে সদোমে চলে গেলেন এবং সেখানেই তাঁবু পাতলেন| 13 প্রভু জানতেন য়ে সদোমের অধিবাসীরা মহাপাপী| 14 লোট চলে গেলে প্রভু অব্রামকে বলল, “তোমার চারদিকে তাকিয়ে দেখ| উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম চারদিকে তাকাও| 15 যত জমিজায়গা দেখতে পাচ্ছ, সব আমি তোমায় এবং তোমার বংশধরদের দেব| এ দেশ চিরকালের জন্যে তোমার হবে| 16 পৃথিবীর ধূলোর মত আমি তোমার উত্তরপুরুষদের সংখ্যাবৃদ্ধি করব| যদি লোকে পৃথিবীর সব ধূলো গুনতে পারে তাহলে তোমার লোকেদের গোনা যাবে| 17 অতএব এগিয়ে যাও, তোমার নিজের দেশে তুমি হেঁটে বেড়াও| এই দেশ আমি তোমায় দিলাম|” 18 তখন অব্রাম তাঁর তাঁবু উঠিয়ে নিলেন| তিনি মম্রির উচ্চ বৃক্ষগুলির কাছে বাস করতে গেলেন| স্থানটি ছিল হিব্রোণ নগরের কাছে| সেখানে অব্রাম প্রভুর উদ্দেশ্যে উপাসনা করার জন্যে একটি বেদী নির্মাণ করলেন|
1 শিমিযরের রাজা ছিলেন অম্রাফল| অরিযোক ছিলেন ইল্লাসরের রাজা| এলমের রাজা ছিলেন কদলাযোমর এবং গোযীমের রাজা তিদিযল| 2 এইসব রাজা, সদোমের রাজা বিরা, ঘমোরার রাজা বির্শা, অদ্মার রাজা শিনাব, সবোযিমের রাজা শিমেবর এবং বিলার (বিলা সোযর নামেও পরিচিত ছিল) রাজার সঙ্গে য়ুদ্ধ করলেন| 3 এই সমস্ত রাজাদের সৈন্যবাহিনী সিদ্দীম উপত্যকায় মিলিত হল| (সিদ্দীম উপত্যকা বর্তমানে লবণ সমুদ্র|) 4 এই রাজারা বারো বছর ধরে কদর্লাযোমরের অনুগত ছিল| কিন্তু 13তম বছরে তারা সবাই কদর্লাযোমরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল| 5 সুতরাং 14তম বছরে রাজা কদর্লাযোমর ও তাঁর মিত্র রাজাদের সঙ্গে বিদ্রোহী রাজাদের য়ুদ্ধ হল| কদর্লাযোমর ও তাঁর মিত্র রাজারা অন্তরোত্ কর্ণযিমের অধিবাসী রফাযীয নামক জাতিকে পরাস্ত করলেন| 6 তারপর তাঁরা হোরীযদের পরাস্ত করলেন| হোরীযরা সেযীর থেকে এল-পারণ (এল-পারণ মরুভূমির কাছে অবস্থিত) পর্য্ন্ত পার্বত্য দেশে বাস করত| 7 তারপর রাজা কদর্লাযোমের উত্তর দিকে গেলেন এবং ঐনমিস্পটে অর্থাত্ কাদেশে গিয়ে সমস্ত অমালেকীযদের পরাস্ত করলেন| তিনি হত্সসোন তামরের অধিবাসী ইমোরীয়দেরও পরাস্ত করলেন| 8 সেই সময় সদোমের রাজা, ঘমোরার রাজা, অদ্মার রাজা, সবোযিমের রাজা এবং বিলার রাজা তাঁদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে সিদ্দীম উপত্যকায় য়ুদ্ধ করতে গেলেন| 9 এই যুদ্ধে অপর পক্ষে ছিলেন এলমের রাজা কদর্লাযোমর, গোযীমের রাজা তিদিযল, শিনিযরের রাজা অম্রাকল এবং ইলাসরের রাজা অরিযোক| অর্থাত্ য়ুদ্ধটা ছিল পাঁচজন রাজার বিরুদ্ধে চারজন রাজার| 10 সিদ্দীম উপত্যকায় আলকাতরায় পূর্ণ অনেক গর্ত ছিল| সদোম এবং ঘমোরার রাজা এবং তাদের সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেল| অনেক সৈন্য ঐসব খাতে পড়ল| কিন্তু অধিকাংশই পাহাড়ে পর্বতে পালিয়ে গেল| 11 সুতরাং সদোম এবং ঘমোরার সমস্ত সরঞ্জাম, তাদের সমস্ত খাদ্যসম্ভার, বস্ত্রাদি এবং অন্যান্য সব জিনিসপত্র প্রতিপক্ষরা নিয়ে চলে গেল| 12 অব্রামের ভ্রাতুষ্পুত্র লোট তখন সদোমে বাস করছিল এবং সদোমের শত্রুরা লোটকে বন্দী করল, লোটের যা কিছু ছিল সব অধিকার করল| 13 লোটের একটি লোককে তারা বন্দী করতে পারে নি| সে পালিয়ে গিয়ে যা যা ঘটেছে সমস্ত অব্রামকে জানাল| অব্রাম তখন ইমোরীয়দের মম্রির গাছগুলির কাছে শিবিরে বাস করছিলেন| মম্রি, ইষ্কোল এবং আনেরের মধ্যে পরস্পরকে সাহায্য করার এক চুক্তি ছিল| তারা অব্রামকে সাহায্য করার একটা চুক্তিও করেছিল| 14 লোট বন্দী হয়েছে জানতে পেরে অব্রাম পরিবারের সবাইকে ডেকে পাঠালেন| তাদের মধ্যে 318 জন শিক্ষিত সৈন্য ছিল| অব্রাম তাঁর লোকেদের পরিচালনা করে শত্রুদের দূরে দান নগর অবধি তাড়িয়ে নিয়ে গেলেন| 15 সেই রাত্রে তিনি ও তাঁর সৈন্যরা অতর্কিতে শত্রুদের আক্রমণ করলেন| তাঁরা শত্রুদের পরাভূত করে দম্মেশকের উত্তরে হোবা পর্য্ন্ত বিতাড়িত করলেন| 16 তারপর শত্রুরা যা যা অধিকার করেছিল, সেই সমস্ত পুনরুদ্ধার করলেন| লোট, লোটের সমস্ত নারী ও ভৃত্যদের পর্য্ন্ত অব্রাম ফিরিযে আনলেন| 17 তারপর অব্রাম কদর্লাযোমর ও তাঁর সঙ্গে য়োগদানকারী রাজাদের পরাস্ত করে তাঁর আগের জায়গায় ফিরে এলেন| তিনি ফিরে এলে সদোমের রাজা তাঁর সঙ্গে শাবী উপত্যকায় (এখন এই স্থান রাজার উপত্যকা নামে পরিচিত) দেখা করতে গেলেন| 18 শালেমের রাজা মল্কীষেদকও অব্রামের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে গেলেন| মল্কীষেদক ছিলেন পরাত্পর ঈশ্বরের একজন যাজক| মল্কীষেদক নিয়ে এলেন রুটি ও দ্রাক্ষারস| 19 অব্রামকে আশীর্বাদ করে মল্কীষেদক বললেন,“হে অব্রাম, পরাত্পর তোমাকে আশীর্বাদ করুন| ঈশ্বর স্বর্গ ও মর্ত্য সৃষ্টি করেছেন| 20 আমরা পরাত্পর ঈশ্বরের প্রশংসা করি| তিনি শত্রুদের পরাস্ত করতে তোমাকে সাহায্য করেছেন|”অব্রাম যুদ্ধের সময় যা যা পেয়েছিলেন তার থেকে এক দশমাংশ মল্কীষেদককে দিলেন| 21 সদোমের রাজা বললেন, “আপনি নিজের জন্যে সব রেখে দিন| শত্রুরা য়ে লোকেদের নিয়ে গেছে শুধু আমার সেই লোকদের আমাকে দিন|” 22 কিন্তু সদোমের রাজাকে অব্রাম বললেন, “পরাত্পর ঈশ্বর, যিনি স্বর্গ মর্ত্য সৃষ্টি করেছেন সেই প্রভুর কাছে আমি শপথ করছি| 23 যা কিছু আপনার তার কিছুই আমি রাখব না| আমি প্রতিশ্রুতি করছি য়ে আমি কিছুই রাখব না| এমনকি একটা সুতো অথবা জুতোর ফিতেও না. আমি চাই না য়ে আপনি বলবেন, ‘অব্রামকে আমি বড় লোক বানিয়েছি|’ 24 আমি শুধু সেটুকুই নেব যা আমার য়োদ্ধারা খেয়েছে| কিন্তু অন্যদের আপনি তাদের ভাগ দিন| যুদ্ধে যা জিতেছি তা আপনি নিয়ে যান, কিন্তু কিছু আনের, ইষ্কোল এবং মম্রিকে দিয়ে যান| এরা যুদ্ধে আমায় সাহায্য করেছে|”
1 এইসব ঘটনাবলির পরে অব্রাম দর্শনের মধ্যে প্রভুর কথা শুনতে পেলেন| ঈশ্বর বললেন, “অব্রাম চিন্তা কোরো না| আমি তোমায় রক্ষা করব| আমি তোমায় এক মহাপুরস্কার দেব|” 2 কিন্তু অব্রাম বললেন, “প্রভু ঈশ্বর, আমায় খুশী করার মত আপনি কিছুই দিতে পারবেন না| কেন? কারণ আমার কোনও পুত্র নেই| তাই আমার মৃত্যুর পরে আমার দম্মেশকীয দাস ইলীযেষর আমার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে|” 3 অব্রাম বললেন, “আপনি আমায় পুত্র দেননি| তাই য়ে দাস আমার ঘরে জন্ম লাভ করেছে সে-ই পাবে আমার সমস্ত ধনসম্পত্তি|” 4 তখন প্রভু অব্রামের সঙ্গে কথা বললেন| ঈশ্বর বললেন, “ঐ দাস তোমার নিজের পুত্র হবে. এবং তোমার ঔরসজাত পুত্রই তোমার সমস্ত কিছুর উত্তরাধিকার পাবে|” 5 তখন ঈশ্বর অব্রামকে বাইরে ডেকে নিয়ে গেলেন| ঈশ্বর বললেন, “আকাশের দিকে তাকাও| দেখ, সেখানে কত তারা| এত তারা য়ে তুমি গুণতেই পারবে না| ভবিষ্যতে তোমার বংশধরেরাও ঐরকম অগুনতি হবে|” 6 অব্রাম ঈশ্বরকে বিশ্বাস করলেন এবং ঈশ্বর অব্রামের বিশ্বাসকে তার ধার্মিকতা হিসেবে বিবেচনা করলেন| 7 এবং ঈশ্বর অব্রামকে বললেন, “আমিই সেই প্রভু, যিনি তোমায় বাবিলের উর থেকে নিয়ে এসেছিলেন, যাতে এই দেশটা আমি তোমায় দিতে পারি| এই দেশ তুমি পাবে|” 8 কিন্তু অব্রাম বললেন, “প্রভু আমার গুরু, এই দেশ য়ে আমি পাব তার নিশ্চয়তা কি?” 9 ঈশ্বর অব্রামকে বললেন, “আমরা একটা চুক্তি করব| আমায় একটা তিন বছরের বাছুর, তিন বছরের ছাগল আর তিন বছরের মেষ এনে দাও| একটা বাচ্চা পায়রা আর একটা ঘুঘুপাখীও এনে দাও|” 10 অব্রাম এই সমস্ত ঈশ্বরের কাছে এনে দিলেন| অব্রাম প্রাণীগুলি হত্যা করে এবং প্রতিটির দুটি করে খণ্ড করে ঐ খণ্ডগুলি থাক-থাক করে সাজিযে রাখলেন| কিন্তু পাখীগুলিকে অব্রাম দুখণ্ড করেন নি| 11 পরে ঐসব প্রাণীর মাংসখণ্ডের জন্যে বড় বড় পাখী ছোঁ মেরে এলো| কিন্তু অব্রাম সেগুলি তাড়িয়ে দিলেন| 12 বেলা বাড়তে থাকল, ঢলে পড়তে লাগল সূর্য়| অব্রামের ভীষণ ঘুম পেল এবং শেষ পর্য্ন্ত তিনি ঘুমিযে পড়লেন| তখন নেমে এল এক ভীষণ অন্ধকার| 13 তখন প্রভু অব্রামকে বললেন, “তোমার কযেকটা কথা জেনে রাখা উচিত্| তোমার উত্তরপুরুষরা য়ে দেশে বাস করবে সেই দেশ তাদের নয়, সেখানে তারা বিদেশী বলে গণ্য হবে| এবং সেই দেশের অধিবাসীরা 400 বছর ধরে তোমার উত্তরপুরুষদের দান করে রাখবে এবং তাদের উপর নানা উত্পীড়ন করবে| 14 কিন্তু তারপর য়ে জাতি তোমার উত্তরপুরুষদের দাস করে রেখেছিল তাদের আমি শাস্তি দেব| তোমার উত্তরপুরুষরা সেই জাতি ত্যাগ করবে এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে যাবে বহু ভাল জিনিস| 15 “তুমি নিজে বহুকাল জীবিত থাকবে| শান্তিতে তুমি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবে| তোমার সমাধি হবে তোমার পরিবারের মধ্যে| 16 চার প্রজন্ম পরে তোমার আত্মীয়স্বজনরা আবার এই দেশে আসবে| তখন তারা এখানকার অধিবাসী ইমোরীয়দের পরাস্ত করবে| তোমার আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে আমি ইমোরীয়দের শাস্তি দেব| এটা ভবিষ্যতে ঘটবে| কারণ ইমোরীয়রা এখনও আমার কাছে শাস্তি পাওয়ার মত খারাপ হয় নি|” 17 সূর্য় অস্ত গেলে গাঢ় অন্ধকার ঘনাল| দুখণ্ড করা মৃত পশুগুলি তখনও মাটির উপরে পড়ে আছে| সেই সময় আগুন ও ধোঁযার স্তম্ভ মৃত পশুগুলির অর্ধেক খণ্ডগুলির মধ্য দিয়ে চলে গেল| 18 সুতরাং ঐদিন প্রভু অব্রামকে একটা প্রতিশ্রুতি দিলেন এবং সেই অনুসারে অব্রামের সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন| প্রভু বললেন, “এই দেশ আমি তোমার উত্তরপুরুষদের দেব| মিশর নদ এবং ফরাত্ নদের মধ্যবর্তী বিশাল ভূভাগ আমি তাদের দেব| 19 এটা হল কেনীয়, কনিষীয, কদ্মোনীয, 20 হিত্তীয়, পরিষীয়, রফাযীয, 21 ইমোরীয়, কনানীয়, গির্গানীয় এবং যিবুষীয় বংশগুলির দেশ|”
1 সারী ছিল অব্রামের স্ত্রী| তার ও অব্রামের কোনও সন্তানাদি ছিল না| সারী মিশর থেকে একজন দাসী এনেছিল| তার নাম হাগার| 2 সারী অব্রামকে বললেন, “প্রভু আমায় সন্তান ধারণের ক্ষমতা দেন নি| তাই তুমি আমার দাসী হাগারের কাছে যাও| আমাকে একটি সন্তান দাও এবং আমি সেই সন্তানকে নিজের বলে গ্রহণ করবো|”অব্রাম সারীর নির্দেশ অনুসরণ করলেন| 3 অব্রাম কনানে দশ বছর বাস করার পরে এই ঘটনা ঘটে| সারী হাগারকে তাঁর স্বামী অব্রামের কাছে পাঠালো| (হাগার ছিল তাঁর মিশরীয দাসী|) 4 অব্রামের দ্বারা হাগার গর্ভবতী হলো| যখন সে একথা জানতে পারল সে খুব গর্বিতা হয়ে উঠল এবং ভাবল সে তার প্রভু পত্নী সারীর চেযে ভাল| 5 কিন্তু সারী অব্রামকে বলল, “আমার দাসী এখন আমাকেই তিরস্কার করে এবং এর জন্যে তুমি দায়ী| আমিই তাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছিলাম| সে গর্ভবতী হল| এখন সে নিজেকে আমার চেয়ে ভাল মনে করে| প্রভু বিচার করুন য়ে কোনটা ঠিক|” 6 কিন্তু অব্রাম সারীকে বলল, “তুমিই হাগারের গৃহকর্ত্রী| তোমার য়ে রকম ইচ্ছে সে রকমভাবেই তুমি হাগারের ব্যবস্থা করবে|” ফলে সারী তাঁর দাসী হাগারকে দুঃখ দিলেন এবং হাগার সেখান থেকে পালিয়ে গেল| 7 মরুভূমির মধ্যে এক জলপূর্ণ কূপের পাশে প্রভুর দূত হাগারকে দেখতে পেল| জলাশযটি ছিল শূর যাওয়ার পথে| 8 সেই দূত বলল, “হাগার তুমি তো সারীর পরিচারিকা| তুমি এখানে কেন? তুমি কোথায় যাচ্ছো?”হাগার বলল, “আমি সারীর কাছ থেকে পালাচ্ছি|” 9 প্রভুর দূত হাগারকে বলল, “সারী তোমার গৃহকর্ত্রী| তার কাছে ফিরে যাও| তার বাধ্য হও| 10 হাগারকে প্রভুর দূত আরও বলল, “তোমার থেকে বিশাল জনসমষ্টি সৃষ্টি হবে| এত বিপুল জনসংখ্যা হবে য়ে তাদের গুনে শেষ করা যাবে না|” 11 প্রভুর দূত আরও বলল,“হাগার, এখন তুমি গর্ভবতী, তুমি হবে এক পুত্রের জননী| পুত্রের নাম দেবে ইশ্মায়েল, কারণ প্রভু শুনেছেন তোমার উপর দুর্ব্যবহার হয়েছে, তিনি তোমাকে সাহায্য করবেন| 12 “ইশ্মায়েল স্বাধীন এবং উদ্দাম হবে য়েমন উদ্দাম হয় বন্য গাধা| সে সবার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে এবং সবাই হবে তার প্রতিপক্ষ| সে স্থান থেকে স্থানান্তরে ঘুরে বেড়াবে এবং ভাইদের বসতির কাছে তাঁবু গাড়বে|” 13 প্রভু হাগারের সঙ্গে কথা বললেন| হাগার ঈশ্বরের এক নতুন নাম দিল| সে তাঁকে বলল, “আপনি হলেন ঈশ্বর যিনি আমায় দেখেন|” সে এই কথা বলল কারণ সে ভাবল, “এরকম জায়গাতেও ঈশ্বর আমায় দেখতে পাচ্ছেন, আমার ভালমন্দের কথা চিন্তা করছেন|” 14 সুতরাং ঐ কূপের নাম হল বের-লহয়-রোযী| কাদেশ এবং বেরদ অঞ্চলের মধ্যে ঐ কূপের অবস্থান| 15 হাগার অব্রামের পুত্রের জন্ম দিল| সে অব্রাম পুত্রের নাম দিল ইশ্মাযেল| 16 যখন হাগারের গর্ভে ইশ্মাযেলের জন্ম হয় তখন অব্রামের বয়স 86 বছর|
1 অব্রামের 99 বছর বয়স হলে প্রভু তাঁর সামনে আবির্ভূত হলেন| প্রভু বললেন, “আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর| আমার জন্যে এই কাজগুলি করো: আমার কথামত চলো এবং সত্পথে জীবনযাপন করো| 2 এটা যদি করো তাহলে আমাদের মধ্যে একটা চুক্তির ব্যবস্থা করব| আমি প্রতিশ্রুতি করছি য়ে তোমার বংশধরদের আমি এক মহান জাতিতে পরিণত করব|” 3 তখন অব্রাম ঈশ্বরের সামনে প্রণামে নত হলেন| ঈশ্বর তাঁকে বললেন, 4 “আমাদের চুক্তিতে এটি আমার অংশ| আমি তোমাকে বহু জাতির পিতা করব| 5 আমি তোমার নাম পরিবর্তন করব| তোমার নাম অব্রামের পরিবর্তে অব্রাহাম হবে| আমি তোমায় এই নাম দিচ্ছি কারণ আমি তোমায় বহু জাতির পিতা করছি| 6 আমি তোমার বংশ অতিশয বৃদ্ধি করব| তোমার থেকে নতুন নতুন জাতির এবং রাজার জন্ম হবে| 7 এবং তোমার ও আমার মধ্যে এক চুক্তি সম্পন্ন হবে| তোমার সমস্ত উত্তরপুরুষগণের জন্যও এই একই চুক্তি প্রয়োজ্য হবে| এই চুক্তি চিরকাল বহাল থাকবে| আমি তোমার ও তোমার উত্তরপুরুষগণের জন্য ঈশ্বর থাকব| 8 আমি তোমাকে এবং তোমার সব উত্তরপুরুষদের এই কনান দেশ দেব যার মধ্য দিয়ে তোমরা যাত্রা করছ| আমি তোমাকে এই দেশ চিরকালের জন্য দেব| আমি হব তোমার ঈশ্বর|” 9 এবং ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, “এখন তোমার দিক থেকে এই চুক্তি হবে এই রকম| তুমি এবং তোমার উত্তরপুরুষগণ আমার চুক্তি মান্য করবে| 10 এটাই চুক্তি যা তুমি মেনে চলবে| তোমার ও আমার মধ্যে এটাই হল চুক্তি| তোমার উত্তরপুরুষগণের জন্যেও এটাই চুক্তি| যত পুত্র সন্তান হবে প্রত্যেককে সুন্নত করতে হবে| 11 তোমার আর আমার মধ্যে চুক্তি য়ে তুমি মেনে চলবে, এই সুন্নত হবে তার প্রমাণস্বরূপ| 12 শিশু পুত্রের বয়স আট দিন হলে এই সুন্নত সম্পন্ন করবে| তোমার পরিবারে যত ছেলের এবং তোমার দাসদের মধ্যে যত ছেলের জন্ম হবে, তোমার বংশধর নয় এমন বিদেশীদের কাছ থেকে তোমার অর্থ দিয়ে তুমি য়ে দাসদের কিনেছিলে তাদের য়ে ছেলেরা জন্মাবে, সকলের অবশ্যই সুন্নত করা হবে| 13 সুতরাং তোমার জাতির প্রত্যেক শিশু পুত্রকে সুন্নত করা হবে| তোমার পরিবারের অথবা ক্রীতদাসের সব পুত্রদের এভাবে সুন্নত করা হবে| 14 অব্রাহাম, তোমার ও আমার মধ্যে এটাই চুক্তি; সুন্নত করা হয়নি এমন কোন পুরুষ থাকলে সে হবে তার নিজের লোকেদের স্বজাতির থেকে বিচ্ছিন্ন| কারণ সে ব্যক্তি আমার চুক্তি ভঙ্গকারী|” 15 ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, “তোমার স্ত্রী সারীকে আমি এক নতুন নাম দেব| তার নতুন নাম হবে সারা অর্থাত্ রানী| 16 আমি তাকে আশীর্বাদ করব| আমি তাকে একটি পুত্র দেব এবং তুমি হবে সেই পুত্রের পিতা| সারা হবে বহু নতুন জাতির মাতা| সারা থেকে আসবে বহু জাতির বহু রাজা|” 17 ঈশ্বরকে য়ে তিনি মান্য করেন এই কথা বোঝাবার জন্যে অব্রাহাম আভূমি মাথা নত করলেন| কিন্তু তিনি নিজের মনে হেসে বললেন, “আমার 100 বছর বয়স| আমার আর সন্তান হতে পারে না| এবং সারার 90 বছর বয়স| সে সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না|” 18 তখন অব্রাহাম ঈশ্বরকে বলল, “আশা করি ইশ্মাযেল বেঁচে থেকে আপনার সেবা করবে|” 19 ঈশ্বর বললেন, “না! আমি বলেছি য়ে তোমার স্ত্রী সারার একটি পুত্র হবে| তুমি তার নাম দেবে ইসহাক| তার সঙ্গে আমি আমার চুক্তি সম্পাদন করব| তার সঙ্গে ঐ চুক্তি এমন হবে যা তার উত্তরপুরুষগণের সঙ্গেও চিরকাল বজায় থাকবে| 20 “তুমি ইশ্মাযেলের কথা বলেছ এবং আমি সে কথা শুনেছি| আমি তাকে আশীর্বাদ করব| তার বহু সন্তানসন্ততি হবে| সে বারোজন মহান নেতার পিতা হবে| তার পরিবার থেকে সৃষ্টি হবে এক মহান জাতির| 21 কিন্তু আমি ইসহাকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হব| সারার য়ে পুত্র হবে সে-ই হবে ইসহাক - পরের বছর ঠিক এই সময় সেই পুত্রের জন্ম হবে|” 22 অব্রাহামের সঙ্গে কথা শেষ করে ঈশ্বর উপরে স্বর্গে চলে গেলেন| 23 ঈশ্বর অব্রাহামকে পরিবারের সমস্ত পুরুষ ও বালকের সুন্নতের কথা বলেছিলেন| সুতরাং অব্রাহাম ইশ্মাযেল এবং তাঁর গৃহে জন্ম হয়েছে এমন সমস্ত দাসদের একত্রে সমবেত করলেন| যাদের অর্থ দিয়ে ক্রয করা হয়েছিল, সেই ক্রীতদাসদেরও তিনি সমবেত করলেন| অব্রাহামের বাড়ীর প্রত্যেক পুরুষ ও বালককে একত্র করা হল| এবং প্রত্যেককে সুন্নত করা হল| তাদের সকলকে একই দিনে সুন্নত করা হল| 24 অব্রাহামকে যখন সুন্নত করা হল তখন তাঁর বয়স 99 বছর| 25 এবং তাঁর পুত্র ইশ্মাযেলের সুন্নতের সময় 13 বছর বয়স ছিল| 26 অব্রাহাম ও তাঁর পুত্রের একই দিনে সুন্নত করা হয়| 27 সেই একই দিনে অব্রাহামের বাড়ীর সমস্ত পুরুষেরাও সুন্নত হয়| য়েসব দাসদের অর্থ দিয়ে ক্রয করা হয়েছিল এবং য়েসব দাসদের তাঁর গৃহেই জন্ম হয়েছিল সকলেরই সুন্নত করা হল|
1 পরে প্রভু পুনরায় অব্রাহামের সামনে আবির্ভূত হলেন| মম্রির ওক বৃক্ষগুলির কাছে অব্রাহাম বাস করছিলেন| একদিন অব্রাহাম নিজের তাঁবুর প্রবেশ পথে বসেছিলেন| তখন দিনের সবচেয়ে চড়া গরমের সময়| 2 অব্রাহাম চোখ তুলে দেখলেন য়ে তাঁর সামনে তিনজন আগন্তুক দাঁড়িয়ে| তাঁদের দেখে অব্রাহাম তাঁদের কাছে গিয়ে অভিবাদন জানালেন| 3 অব্রাহাম বললেন, “মহাশয়গণ, আমি আপনাদের সেবক, আমার এখানে আপনারা কিছুক্ষণ অবস্থান করুন| 4 আপনাদের পা ধোযার জন্যে আমি জল এনে দিচ্ছি| আপনারা গাছের ছায়ায বিশ্রাম করুন| 5 আমি আপনাদের খাবারের ব্যবস্থা করছি এবং আপনারা ইচ্ছামত আহার করে আবার আপনাদের গন্তব্য অভিমুখে যাত্রা করতে পারেন|”ঐ তিনজন বললেন, “বেশ কথা! য়েমন বললেন, আমরা তেমনই করব|” 6 অব্রাহাম তাড়াতাড়ি তাঁবুর ভেতরে গেলেন| অব্রাহাম সারাকে বললেন, “চট করে তিনজনের মত রুটির ব্যবস্থা করো|” 7 তারপর অব্রাহাম তাঁর গোয়ালে দৌড়ে গেলেন| সবচেয়ে ভাল বাছুরটা বেছে নিলেন| অব্রাহাম তখনই এক ভৃত্যকে ওটাকে মেরে রান্না করার জন্যে বললেন| 8 তারপর অব্রাহাম সেই মাংস আর খানিকটা দুধ ও পনীর এনে অতিথি তিনজনের সামনে রাখলেন| পরিবেশন করার জন্যে অব্রাহাম সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেন এবং তাঁরা গাছের ছায়ায় বসে ভোজন করলেন| 9 তারপর তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার স্ত্রী সারা কোথায়?”অব্রাহাম বললেন, “ওখানে ঐ তাঁবুর মধ্যে|” 10 তখন প্রভু বললেন, “আমি আবার বসন্তকালে আসব| তখন তোমার স্ত্রী সারার একটি পুত্র হবে|”তাঁবুর ভেতর থেকে সারা সমস্ত কথাবার্তা শুনছিলেন| 11 অব্রাহাম ও সারা তখন রীতিমত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা| সন্তান জন্ম দেওয়ার বয়স সারা অনেকদিন আগে পার হয়ে এসেছেন| 12 স্বভাবতই সারা যা শুনলেন তা বিশ্বাস করলেন না| নিজের মনে মনে সারা হেসে বললেন, “আমি বৃদ্ধা হয়েছি আর আমার স্বামীও বৃদ্ধ| সন্তান প্রসবের পক্ষে আমার অনেক বেশী বয়স হয়েছে|” 13 তখন প্রভু অব্রাহামকে বললেন, “সারা হাসছে| সারা ভাবছে য়ে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পক্ষে তার অনেক বেশী বয়স হয়েছে| 14 কিন্তু প্রভুর পক্ষে কি কোনও কাজ খুব কঠিন? না! আমি য়েমন বলেছি, আবার বসন্তকালে, তেমনই আসব এবং তোমার স্ত্রী সারার তখন সন্তান হবে|” 15 কিন্তু সারা বলল, “আমি হাসি নি! (একথা বললেন কারণ তিনি ভয় পেয়েছিলেন|)কিন্তু প্রভু বললেন, “না! আমি জানি, তা সত্যি নয়! তুমি হেসেছিলে!” 16 তারপর সেই তিনজন আগন্তুক যাওয়ার জন্যে উঠে দাঁড়ালেন| সদোমের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন এবং সদোম অভিমুখে চলতে শুরু করলেন| তাঁদের এগিয়ে দেওয়ার জন্য অব্রাহামও তাদের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটতে শুরু করলেন| 17 প্রভু আপন মনে বললেন, “এখন আমি কি করব তা কি অব্রাহামকে বলব? 18 অব্রাহাম থেকে জন্মলাভ করবে এক মহান ও শক্তিশালী জাতি এবং অব্রাহামের জন্যেই পৃথিবীর সমস্ত মানুষ আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে| 19 আমি অব্রাহামের সাথে এক বিশেষ চুক্তি করেছি| প্রভুর ইচ্ছা অনুসারে জীবনযাপনের জন্যে যাতে অব্রাহামের সন্তানসন্ততি ও উত্তরপুরুষগণ অব্রাহামের আজ্ঞা পালন করে তাই এই ব্যবস্থা করেছি| এটা করেছি যাতে তারা ন্যায়পরায়ণ ও সত্ জীবনযাপন করে| তাহলে আমি প্রভু, প্রতিশ্রুত জিনিসগুলি দিতে পারব|” 20 তারপরে প্রভু বললেন, “য়ে নিদারুণ পাপ সেখানে সংঘটিত হচ্ছে, তার জন্য আমি সদোম এবং ঘমোরার বিরুদ্ধে তীব্র আর্তনাদ শুনেছি| 21 যত খারাপ বলে শুনেছি তা সত্যিই তত খারাপ কিনা তা আমি নিজে গিয়ে দেখব| তাহলে আমি নিশ্চিতভাবে সব জানব|” 22 তখন তাঁরা তিনজন সদোম অভিমুখে হাঁটতে শুরু করলেন| কিন্তু অব্রাহাম প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে রইলেন| 23 অব্রাহাম প্রভুর কাছে এলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, “প্রভু, আপনি কি ভাল লোকেদেরও ধ্বংস করবেন য়েমন আপনি মন্দ লোকেদের ধ্বংস করেন? 24 সদোম নগরে যদি 50 জনও ভাল লোক থাকে তাহলে আপনি কি করবেন? তাহলেও কি আপনি নগরটা ধ্বংস করবেন? নিশ্চয়ই আপনি ঐ নগরবাসী 50 জন ভাল লোকের জন্যে নগরটা ধ্বংস করবেন? 25 তাহলে আপনি নিশ্চয়ই ঐ নগরটা বা ঐ খারাপ লোকেদের ধ্বংস করবেন না? যদি তা করেন তাহলে ভাল এবং মন্দ লোকেদের একই পরিণতি হবে| তার অর্থ, ভাল এবং মন্দ জাতীয উভয় লোকদেরই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে| আপনি সমস্ত পৃথিবীর বিচারক| আমি জানি আপনি ঠিক বিচারই করবেন|” 26 তখন প্রভু বললেন, “আমি যদি সদোম নগরে 50 জন ভাল লোক পাই তাহলে আমি সমগ্র নগরটাকেই রক্ষা করব|” 27 তখন অব্রাহাম বললেন, “আপনার তুলনায় আমি নেহাতই ধুলো আর ছাই| কিন্তু একটা প্রশ্ন করে আবার আপনাকে বিরক্ত করছি| 28 যদি ভাল লোকদের থেকে 5 জনেকে খুঁজে না পাওয়া যায় তখন কি করবেন? নগরে যদি মাত্র 45 জন ভাল লোক থাকে? মাত্র 5 জনকে পাওয়া গেল না বলে কি আপনি গোটা নগর ধ্বংস করে ফেলবেন?”তখন প্রভু বললেন, “যদি আমি 45 জন ভাল লোককেও পাই তাহলে ঐ নগর ধ্বংস করব না|” 29 অব্রাহাম আবার বললেন, “সেখানে গিয়ে আপনি যদি মাত্র 40 জন ভাল লোককে পান তাহলে কি আপনি পুরো নগর ধ্বংস করবেন?”প্রভু বললেন, “আমি যদি 40 জন ভাল লোককেও পাই তাহলে আমি নগরটা ধ্বংস করব না|” 30 অব্রাহাম বললেন, “প্রভু দয়া করে আমার ওপর রাগ করবেন না| একটা প্রশ্ন করি! যদি নগরে মাত্র 30 জন ভাল লোককে পান তাহলেও কি আপনি ঐ নগর ধ্বংস করবেন?”তখন প্রভু বললেন, “আমি যদি 30 জন ভাল লোক পাই তাহলে নগরটা ধ্বংস করব না|” 31 তখন অব্রাহাম বললেন, “আপনাকে কি আর একবার বিরক্ত করতে পারি? যদি সেখানে মাত্র 20 জন ভাল লোক পান তাহলে কি করবেন?”প্রভু বললেন, “আমি যদি 20 জন ভাল লোক পাই তাহলে আমি নগরটা ধ্বংস করবো না|” 32 তখন অব্রাহাম বললেন, “প্রভু দয়া করে রাগ করবেন না, কিন্তু শেষবারের মতো আর একটি প্রশ্ন দিয়ে আপনাকে বিরক্ত করি| আপনি যদি সেখানে মাত্র 10 জন ভাল লোক পান তাহলে আপনি কি করবেন?”প্রভু বললেন, “ঐ নগরে 10 জন ভাল লোক পেলেও আমি তা ধ্বংস করব না|” 33 প্রভুর অব্রাহামকে যা বলার ছিল, সব বলা হয়ে গেল| এবার প্রভু তাঁর পথে চলে গেলেন এবং অব্রাহাম নিজের বাসস্থানে ফিরে গেলেন|
1 সেদিন সন্ধ্যায় সদোম নগরে দুজন দূত এলেন| তখন লোট নগরের প্রবেশ পথে বসেছিলেন| তিনি দূতদের আসতে দেখলেন| লোট ভাবলেন য়ে তারা সাধারণ পথিক, নগরের মধ্য দিয়ে কোথাও যাচ্ছে| লৌট উঠে গিয়ে তাঁদের অভিবাদন করে 2 বললেন, “মহাশয়গণ, অনুগ্রহ করে একবার আমার বাড়ীতে আসুন এবং আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন| সেখানে আপনারা হাত-পা ধুয়ে রাত্রিবাস করতে পারেন| তাহলে কাল সকালে আবার আপনাদের গন্তব্য অভিমুখে যাত্রা করতে পারবেন|”দূত দুজন বললেন, “না, আমরা চকেই রাত্রিবাস করব|” 3 কিন্তু লৌট নিজের বাড়ীতে তাঁদের নিয়ে যাওয়ার জন্যে পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন| তাই দূতরা শেষ পর্য্ন্ত লোটের বাড়ীতে থেকে রাজী হলেন| তাঁরা লোটের বাড়ীতে গেলেন| লোট তাঁদের কিছু পানীয় দিলেন| লৌট তাঁদের রুটি বানিয়ে দিলেন এবং তাঁরা সেই রুটি খেলেন| 4 সেদিন সন্ধ্যায় ঘুমোতে যাওয়ার ঠিক আগে, নগরের নানা প্রান্ত থেকে নানা বয়সের বহু লোক লোটের বাড়িতে এল| সদোমের সেইসব লোকেরা লোটের বাড়ী ঘিরে ফেলল এবং লোটকে চিত্কার করে ডাকতে লাগল| 5 তারা বলল, “আজ সন্ধ্যায় যারা এসেছে, কোথায় তারা? তাদের বাইরে নিয়ে এস - আমরা তাদের সাথে য়ৌন সহবাস করতে চাই|” 6 লৌট বাইরে বেরিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে দিল| 7 সেই জনতার উদ্দেশ্যে লোট বলল, “না! বন্ধুরা, আমি মিনতি করছি, এমন খারাপ কাজ কোরো না| 8 দেখ, আমার দুটি মেয়ে আছে - কোনও পুরুষ তাদের স্পর্শ করে নি| তোমাদের জন্যে আমি নিজের কন্যাদের দেব| তোমরা তাদের নিয়ে যা খুশী করতে পারো| কিন্তু দয়া করে এই অতিথি দুজনের প্রতি কিছু কোরো না| এই দুজন আমার ঘরে এসেছে এবং আমার অবশ্যই এদের রক্ষা করা উচিত্|” 9 য়েসব লোকেরা লোটের বাড়ী ঘিরে রেখেছিল তারা উত্তর দিল, “আমাদের পথ থেকে সরে যাও|” তারপর তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “এই লোকটা একদিন অতিথি হিসেবে আমাদের নগরে বাস করতে এসেছিল| এখন জ্ঞান দিচ্ছে, আমরা কি করব না করব!” তখন সেই লোকেরা লোটকে বলল, “এখন তোমার প্রতি ওদের চেয়ে আরও বেশী খারাপ ব্যবহার করব|” অতএব সেই জনতা লোটের দিকে এগিয়ে য়েতে থাকল| ক্রমে দরজা ভেঙ্গে ফেলার উপক্রম| 10 কিন্তু য়ে দুজন পুরুষ লোটের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা হঠাত্ দরজা খুলে বেরিয়ে এসে লোটকে ভেতরে টেনে নিয়ে গেলেন এবং ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন| 11 তারপর তাঁরা বাইরের মারমুখো জনতার জন্যে কিছু একটা করলেন| ফলে যুবক, বৃদ্ধ, সব বদমাশ লোকেরা অন্ধ হয়ে গেল| এর ফলে যারা বাড়ির ভেতর জোর করে ঢোকার চেষ্টা করছিল তারা ভেতরে ঢোকার দরজাই খুঁজে পেল না| 12 অতিথি দুজন লোটকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার পরিবারের আর কেউ কি এই শহরে বাস করে? তোমার জামাই, ছেলে, মেয়ে কিংবা পরিবারের আর কেউ কি এখানে আছে? যদি থাকে তাহলে তাদের এখনই এই জায়গা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলো| 13 আমরা এই নগর ধ্বংস করে দেব| এই নগর য়ে কত খারাপ তা প্রভু শুনেছেন| তাই এই নগর ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তিনি আমাদের পাঠিয়েছেন|” 14 তখন লোট বেরিয়ে গিয়ে তাঁর অন্যান্য মেয়েদের যারা বিয়ে করেছে সেই মেয়েদের স্বামীদের অর্থাত্ জামাইদের সঙ্গে কথা বললেন| লোট বলল, “তাড়াতাড়ি করো! এক্ষুনি এই জায়গা ছেড়ে চলে যাও! প্রভু এখনই এই জায়গা ধ্বংস করবেন|” কিন্তু তারা ভাবল, লোট বোধহয় তামাশা করছেন| 15 পরদিন ভোরে সেই দূতেরা লোটকে তাড়া দিলেন| তাঁরা বললেন, “এই নগরবাসীদের শাস্তি দেওয়া হবে| সুতরাং তুমি, তোমার স্ত্রী এবং য়ে দুজন মেয়ে তোমার কাছে থাকে তাদের নিয়ে শীঘ্রই এই জায়গা ছেড়ে চলে যাও| তাহলে এই নগরের সঙ্গে তোমরা আর ধ্বংস হবে না|” 16 কিন্তু লোটের সব গুলিযে গেল এবং তিনি নগর ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাড়া করলেন না| সুতরাং ঐ দুজন লোট এবং তাঁর স্ত্রীর এবং দুই মেয়ের হাত চেপে ধরল| ঐ দুজন লোট এবং তাঁর পরিবারকে নিরাপদে নগরের বাইরে নিয়ে গেলেন| লৌট এবং তার পরিবারের প্রতি প্রভু দয়ালু ছিলেন| 17 তাই ঐ দুজন লোট এবং তাঁর পরিবারকে নগরের বাইরে নিয়ে এলেন| তাঁরা নগরের বাইরে চলে এলে সেই দুজন দুতের একজন বললেন, “এবার প্রাণ বাঁচাবার জন্যে তোমরা দৌড় দাও! আর পেছনের দিকে তাকাবে না| উপত্যকার কোনও জায়গাতে দাঁড়াবে না| যতক্ষণ না ঐ পর্বতে পৌঁছবে ততক্ষণ শুধুই দৌড়বে| থামলে, নগরের সঙ্গে তোমরাও ধ্বংস হয়ে যাবে!” 18 কিন্তু লৌট এই দুজনকে বললেন, “মহাশয়গণ, দয়া করে আমায় অত দূরে দৌড়ে য়েতে বলবেন না! 19 আমি আপনাদের সেবকমাত্র, তবু আমার প্রতি আপনাদের অসীম দয়া| দয়া করে আমার জীবন রক্ষা করেছেন| কিন্তু ঐ পর্বত পর্য্ন্ত সমস্ত পথ দৌড়োবার ক্ষমতা আমার নেই| যদি আমি খুব ধীরে যাই তবে বিপদ ঘটবে এবং আমি নিহত হব! 20 দেখুন, এখানে কাছেই একটা খুব ছোট শহর আছে| আমি সেই শহর পর্য্ন্ত দৌড়ে বেঁচে য়েতে পারি|” 21 দূত লোটকে বললেন, “ভালো কথা আমি তোমার অনুরোধ স্বীকার করেছি| আমি তোমাকে সেটা করতে দেব| আমি ঐ শহর ধ্বংস করব না| 22 কিন্তু সেখানে শীঘ্রই দৌড়ে যাও| যতক্ষণ না নিরাপদে ঐ শহরে তুমি পৌঁছোচ্ছ ততক্ষণ সদোম ধ্বংস করতে পারব না|” (ঐ শহরের নাম সোযর কারণ শহরটি খুব ছোট|) 23 সূর্য়োদযের সঙ্গে সঙ্গে লোট সোযরে পৌঁছলেন| 24 একই সময়ে প্রভু সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস করা শুরু করলেন| প্রভু আকাশ থেকে আগুন আর জ্বলন্ত গন্ধক বর্ষণ শুরু করলেন| 25 অর্থাত্ প্রভু ঐ নগরগুলি ধ্বংস করলেন| সমস্ত গাছপালা, সমস্ত লোকজন, সমগ্র উপত্যকাটাই প্রভু ধ্বংস করলেন| 26 লোট যখন স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিলেন তখন লোটের স্ত্রী নিষেধ ভুলে একবার পেছনে নগরের দিকে তাকালেন এবং তখনই লবণের মূর্ত্তি হয়ে গেলেন| 27 খুব সকালে অব্রাহাম আগে য়েখানটাতে প্রভুর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন সেই স্থানটিতে তিনি আবার গিয়ে দাঁড়ালেন| 28 অব্রাহাম সদোম এবং ঘমোরার দিকে তাকিযে দেখলেন| সমগ্র উপত্যকার ওপর দৃষ্টিপাত করে অব্রাহাম দেখলেন য়ে সমস্ত উপত্যকা থেকে ধোঁযা উঠছে| দেখে মনে হল বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ফলস্বরূপ ঐ ধোঁযা| 29 ঈশ্বর উপত্যকার সমস্ত নগর ধ্বংস করলেন| কিন্তু ঈশ্বর ঐ নগরগুলি ধ্বংস করার সময় অব্রাহামের কথা মনে রেখেছিলেন এবং তিনি অব্রাহামের ভ্রাতুষ্পুত্রকে ধ্বংস করেন নি| লোট ঐ উপত্যকার নগরগুলির মধ্যে বাস করছিলেন| কিন্তু নগরগুলি ধ্বংস করার আগে ঈশ্বর লোটকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন| 30 সোযরে বাস করতে লোটের ভয় করছিল| তাই তিনি ও তাঁর দুই মেয়ে পর্বতে বাস করতে চলে গেলেন| সেখানে তাঁরা একটা গুহার মধ্যে বাস করতে লাগলেন| 31 দুজনের মধ্যে য়ে মেয়ে বড় সে একদিন ছোট বোনকে বলল, “পৃথিবীতে সর্বত্র স্ত্রী ও পুরুষ বিয়ে করে এবং তাদের সন্তানাদি হয়| কিন্তু আমাদের পিতা বৃদ্ধ হয়েছেন এবং আমাদের সন্তানাদি দিতে পারে এমন অন্য পুরুষ এখানে নেই| 32 তাই আমরা পিতাকে প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করিযে বেহুঁশ করিয়ে দেব| তারপর তাঁর সঙ্গে আমরা য়ৌনসঙ্গম করব| আমাদের পরিবার রক্ষা করার জন্যে আমরা এইভাবে আমাদের পিতার সাহায্য নেব!” 33 সেই রাত্রে দু মেয়ে তাদের পিতার কাছে গেল এবং তাঁকে প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করতে দিল| তারপর বড় মেয়ে পিতার বিছানায গিয়ে তাঁর সঙ্গে য়ৌন সঙ্গম করল| লোট এমন নেশাগ্রস্ত ছিলেন য়ে তাঁর বিছানায় কে কখন এল এবং কে কখন গেল কিছুই বুঝতে পারলেন না| 34 পরদিন ছোট বোনকে বড় বোন বলল, “গত রাত্রে আমি পিতার সঙ্গে এক বিছানায শুয়েছি| আজ রাতে আবার তাঁকে দ্রাক্ষারস পান করিযে বেহুঁশ করে দেব| তাহলে তুমি তাঁর সঙ্গে য়ৌন সঙ্গম করতে পারবে| এভাবে আমরা সন্তানাদি পেতে আমাদের পিতার সাহায্য নেব| এতে আমাদের বংশধারা অব্যাহত থাকবে|” 35 সুতরাং সেই রাত্রে দু মেয়ে আবার পিতাকে নেশাতে বেহুঁশ করে দিল| তারপর ছোট মেয়ে পিতার বিছানায গিয়ে পিতার সঙ্গে য়ৌন সঙ্গম করল| এবারেও লোট এমন নেশাগ্রস্ত ছিলেন য়ে জানতে পারলেন না কে তার বিছানায এল, কে গেল| 36 লোটের দু মেয়েই গর্ভবতী হল| তাদের পিতাই তাদের সন্তানাদির পিতা| 37 বড় মেয়ের হল এক পুত্র সন্তান| তার নাম হল মোযাব| বর্তমানে য়ে মোয়াবীয় জাতি আছে তাদের আদিপুরুষ হলেন মোযাব| 38 ছোট মেয়েও এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| তার নাম বিন্-অম্মি| বর্তমানে য়ে অম্মোন জাতি আছে তাদের আদিপুরুষ হলেন বিন্-অম্মি|
1 অব্রাহাম পূর্বের বাসস্থান ত্যাগ করে নেগেভে গেলেন| তিনি কাদেশ এবং শূরের মধ্যবর্তী গরার নগরে বাস করা শুরু করলেন| 2 গরারে বাস করার সময় অব্রাহাম সবাইকে বললেন য়ে সারা তাঁর বোন| গরারের রাজা অবীমেলক সে কথা শুনলেন| অবীমেলক সারাকে কামনা করলেন, তাই সারাকে নিয়ে আসার জন্য কযেকজন ভৃত্যকে পাঠালেন| 3 কিন্তু রাত্রে ঈশ্বর স্বপ্নে অবীমেলকের কাছে এলেন| ঈশ্বর বললেন, “তোমার মরণ ঘনিয়ে এসেছে| য়ে নারীকে তুমি এনেছ সে বিবাহিতা|” 4 কিন্তু অবীমেলক তখন পর্য্ন্ত সারাকে শয়্য়ার সঙ্গিনী করেন নি| তাই অবীমেলক বললেন, “প্রভু, আমি তো অপরাধ করিনি| আপনি কি একজন নিরপরাধকে হত্যা করবেন? 5 অব্রাহাম নিজে আমায় বলেছে য়ে, ‘এই নারী তার বোন|’ আর ঐ নারীও বলেছে য়ে, ‘ঐ পুরুষ তার ভাই|’ আমি তো কোন অপরাধ করিনি| আমি তো জানতামই না য়ে আমি কি করছি|” 6 তখন ঈশ্বর স্বপ্নের মধ্যে অবীমেলককে বললেন য়ে, “হ্যাঁ, আমি জানি তুমি নির্দোষ এবং এটাও জানি য়ে তুমি কি করছ তা তুমি জানতে না| তোমায় আমি বাঁচিয়ে দিয়েছি| আমি তোমাকে আমার বিরুদ্ধে পাপ করতে দিই নি| আমিই তোমায় ঐ নারীকে শয়্য়ায নিয়ে য়েতে দিই নি| 7 সুতরাং তুমি অব্রাহাম ও তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে দাও| অব্রাহাম একজন ভাববাদী| সে তোমার জন্যে প্রার্থনা করবে এবং তুমি তাতে জীবন লাভ করবে| কিন্তু তুমি যদি অব্রাহাম ও তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে না দাও তাহলে আমি নিশ্চিত য়ে তোমার মৃত্যু আসন্ন এবং তোমার সমস্ত পরিবারেরও মৃত্যু হবে|” 8 সুতরাং পরদিন খুব সকালে অবীমেলক তাঁর ভৃত্যদের ডেকে তাঁর স্বপ্নের কথা বললেন| তাঁর স্বপ্নের কথা শুনে ভৃত্যরা খুব ভীত হয়ে পড়ল| 9 তখন অবীমেলক অব্রাহামকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন আপনি আমাদের প্রতি এরকম ব্যবহার করলেন? আমি আপনার প্রতি কি অন্যায় করেছি? কেন মিথ্যে বললেন য়ে ঐ নারীটি আপনার বোন? আমার রাজত্বে আপনি অনেক বিপর্য়য ডেকে এনেছেন| আমার প্রতি এসব করা আপনার উচিত্ হয় নি| 10 আপনি কিসের ভয় পাচ্ছিলেন? কেন আপনি আমার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করলেন?” 11 তখন অব্রাহাম বললেন, “আমি ভয় পেয়েছিলাম| আমি ভেবেছিলাম, এখানে কেউ বোধহয় ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে না| তাই ভেবেছিলাম, সারাকে পাওয়ার জন্যে আমাকে কেউ হত্যা করতেও পারে| 12 সারা আমার স্ত্রী, আবার আমার বোনও বটে| সারা আমার পিতার কন্যা বটে, কিন্তু আমার মাতার কন্যা নয়| 13 ঈশ্বর আমাকে পিতৃগৃহ থেকে দূরে কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন| ঈশ্বর আমাকে অনেক দেশে নিয়ে গেছেন| যখন এরকম হল তখন আমি সারাকে বললাম, ‘আমার জন্য কিছু করো; যেখানেই আমরা যাব, সবাইকে বলবে য়ে তুমি আমার বোন|” 14 তখন অবীমেলক আসল ব্যাপারটা বুঝলেন| তাই অবীমেলক অব্রাহামের হাতে সারাকে ফিরিযে দিলেন| সেই সঙ্গে অবীমেলক অব্রাহামকে কিছু দাস, মেষ ও গবাদি পশুও দিলেন| 15 এবং অবীমেলক বললেন, “চারদিকে তাকিয়ে দেখুন| এসবই আমার জমি| আপনার যেখানে খুশী সেখানে থাকতে পারেন|” 16 আর অবীমেলক সারাকে বললেন, “তোমার ভাই অব্রাহামকে আমি 1200 রৌপ্যমুদ্রা দিয়েছি| যা কিছু ঘটেছে সেসবের জন্যে আমি দুঃখিত এটা বোঝাতেই এই রৌপ্যমুদ্রা| সবাই জানুক য়ে আমি ন্যায় মেনে কাজ করেছি|” 17 অবীমেলকের পরিবারের সমস্ত নারীর গর্ভধারণের ক্ষমতা প্রভু হরণ করেছিলেন| অবীমেলক সারাকে অধিকার করেছিলেন বলে প্রভু এই কাজ করেছিলেন| কিন্তু অব্রাহাম ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন এবং ঈশ্বর অবীমেলক, অবীমেলকের স্ত্রী ও দাসীদের সন্তানের জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা ফিরিযে দিলেন| 18
1 প্রভু সারার জন্যে য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা রক্ষা করলেন| প্রভু সারার জন্যে দেওয়া প্রতিশ্রুতি সম্পন্ন করলেন| 2 সারা গর্ভবতী হলেন এবং এই বেশী বয়সে অব্রাহামের জন্যে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলেন| ঈশ্বর য়েভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেভাবেই সব সম্পন্ন হল| 3 সারা একটি পুত্রের জন্ম দিলেন এবং অব্রাহাম তার নাম রাখলেন ইসহাক| 4 ইসহাকের আট দিন বয়স হলে, য়েমনটি ঈশ্বর বলেছিলেন ঠিক সেইভাবে অব্রাহাম তাঁকে সুন্নত করলেন| 5 ইসহাকের জন্মের সময় অব্রাহামের বয়স ছিল 100 বছর| 6 এবং সারা বললেন, “ঈশ্বর আমাকে আনন্দিত করেছেন| য়ে শুনবে সেই আমার সুখে সুখী হবে| 7 কেউ ভাবে নি য়ে আমি অব্রাহামের পুত্রের জন্ম দেব| কিন্তু এই বৃদ্ধ বয়সেও আমি অব্রাহামকে পুত্র দিতে পেরেছি|” 8 ইসহাক ক্রমশঃ বড় হতে লাগল| শীঘ্রই সে শক্ত খাবার খাওয়ার মত বড় হল| তখন অব্রাহাম একটা মস্ত ভোজ দিলেন| 9 অব্রাহামের প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছিল হাগার নামে মিশরীয দাসী| সারা দেখলেন হাগারের সেই পুত্র ইসহাককে নিয়ে মজা করছে| তাই সারা বিচলিত হলেন| 10 সারা অব্রাহামকে বললেন, “ঐ দাসী আর তার পুত্রের হাত থেকে আমাদের বাঁচাও| ওদের বিদায় করে দাও! যখন আমাদের মৃত্যু হবে তখন আমাদের যা কিছু ধন-সম্পদ ইসহাকই পাবে| আমি চাই না য়ে আমার পুত্র ইসহাকের সঙ্গে আমার দাসীর পুত্রও সবকিছুর ভাগ পাক!” 11 এতে অব্রাহাম খুব বিচলিত হলেন| তিনি তাঁর পুত্র ইশ্মায়েলের জন্যে উদ্বিগ্ন হলেন| 12 কিন্তু অব্রাহামকে ঈশ্বর বললেন, “ঐ পুত্র আর দাসীর জন্যে চিন্তা কোরো না| সারা যা চায় তা-ই করো| তোমার একমাত্র উত্তরাধিকারী হবে ইসহাক| 13 কিন্তু তোমার দাসী পুত্রকেও আমি আশীর্বাদ করব| সে তোমার পুত্র সুতরাং তার পরিবার থেকেও আমি এক মহান জাতি সৃষ্টি করব|” 14 পরদিন খুব ভোরে অব্রাহাম কিছু খাদ্য ও পানীয় জল এনে হাগারকে দিলেন| তাই সম্বল করে হাগার পুত্রকে নিয়ে চলে গেল| হাগার সেই স্থান ত্যাগ করে বের্-শেবা মরুভূমির মধ্যে ঘুরে বেড়াতে লাগল| 15 কিছুক্ষণ পরে সব জল ফুরিযে গেল| পিপাসা মেটাবার জন্যে আর কিছু থাকল না| তখন হাগার তার পুত্রকে একটা ঝোপের নীচে রাখল| 16 হাগার খানিকটা দূরে হেঁটে গেল| তারপর সেখানেই বসে পড়ল| হাগারের ভয় হল, জলের অভাবে তার পুত্র বোধ হয় মারা যাবে| পুত্রের মৃত্যু সে দেখতে পারবে না| তাই সেখানে বসে বসে সে কাঁদতে লাগল| 17 ঈশ্বর সেই পুত্রের কান্না শুনতে পেলেন এবং স্বর্গ থেকে ঈশ্বরের দূত হাগারকে বলল, “কি হয়েছে? ভয় পেও না! প্রভু তোমার পুত্রের কান্না শুনতে পেয়েছেন| 18 যাও, পুত্রকে গিয়ে দেখ| ওর হাত ধরে এগিয়ে চলো| আমি তাকে এক বৃহত্ জাতির পিতা করব| 19 তখন হাগার ঈশ্বরের কৃপায় একটা কূপ দেখতে পেল| তারপর হাগার সেই কূপের জলে নিজের জলপাত্র পূর্ণ করল| তারপর সেই জল নিয়ে গিয়ে পুত্রকে পান করাল| 20 সেই পুত্র বড় হতে লাগল আর ঈশ্বর সারাক্ষণ তার সঙ্গে থাকলেন| ইশ্মাযেল সেই মরুভূমির মধ্যেই বড় হতে লাগল| ক্রমে ক্রমে সে হল একজন শিকারী| তীরধনুকে সে হয়ে উঠল খুব দক্ষ| 21 তার মা এক মিশরীয় কন্যার সঙ্গে তার বিয়ে দিল| তারা সেই পারণ নামের মরুভূমিতেই বাস করতে লাগল| 22 তারপর অবীমেলক ও ফীখোল অব্রাহামের সঙ্গে কথা বললেন| ফীখোল ছিলেন অবীমেলকের সৈন্যবাহিনীর প্রধান| তাঁরা অব্রাহামকে বললেন, “তোমার সব কাজেতেই ঈশ্বর তোমার সঙ্গে আছেন| 23 সুতরাং ঈশ্বরের সাক্ষাতে তুমি আমায় একটা প্রতিশ্রুতি দাও| প্রতিজ্ঞা করো য়ে তুমি আমার ও আমার সন্তানসন্ততির প্রতি ন্যায়পরায়ণ থাকবে| প্রতিশ্রুতি দাও য়ে তুমি আমার প্রতি এবং য়ে দেশে বাস করছ সেই দেশের প্রতি ন্যায়পরায়ণ হবে| প্রতিশ্রুতি দাও য়ে আমি তোমার প্রতি য়েরকম ন্যায়পরায়ণ, তুমিও আমার প্রতি সেরকম ন্যায়পরায়ণ হবে|” 24 এবং অব্রাহাম বললেন, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি য়ে আপনি আমার প্রতি য়েরকম আচরণ করেছেন আমিও আপনার প্রতি সেরকম আচরণ করব|” 25 তারপর অব্রাহাম অবীমেলকের কাছে একটা অভিযোগ করলেন| অব্রাহাম অবীমেলকের কাছে অভিযোগ করলেন য়ে তাঁর দাসরা একটা পানীয় জলের কূপ অধিকার করে রেখেছে| সেই কূপটি অব্রাহামের দাসরা খনন করেছিল| 26 কিন্তু অবীমেলক বললেন, “কে এরকম করেছে আমি জানি না| আপনি তো এর আগে এ ব্যাপারে কখনও কিছু বলেন নি!” 27 সুতরাং অব্রাহাম আর অবীমেলক দুজনে চুক্তিবদ্ধ হলেন| অবীমেলক চুক্তির প্রমাণ হিসেবে অব্রাহাম কযেকটা মেঘ আর গবাদি পশু দিলেন| 28 অব্রাহাম অবীমেলকের সামনে সাতটা মেঘ পৃথক করে রাখলেন| 29 অবীমেলক অব্রাহামকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমার সামনে এই সাতটা মেঘ পৃথক করে রাখলেন কেন? 30 অব্রাহাম উত্তর দিলেন, “আপনি যখন এই সাতটা মেঘ আমার কাছ থেকে নেবেন তখন প্রমাণিত হবে য়ে আমি এই কূপ খনন করেছিলাম|” 31 তারপর থেকে ঐ কূপের নাম হল বের্-শেবা| কারণ ঐ স্থানে দুজনে পরস্পরের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| 32 অতএব বের্-শেবাতে অব্রাহাম ও অবীমেলক দুজনে একটা চুক্তি সম্পাদন করলেন| তারপর অবীমেলক তাঁর সৈন্যাধক্ষ্যদের নিয়ে পলেষ্টীয়দের দেশে ফিরে গেলেন| 33 বের্-শেবাতে অব্রাহাম একটা চিরহরিত্ ঝাউগাছ রোপণ করলেন| সেখানে তিনি প্রভু শাশ্বত ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন| 34 অব্রাহাম পলেষ্টীয়দের দেশে বহুকাল বাস করলেন|
1 এই সমস্ত কিছুর পরে ঈশ্বর ঠিক করলেন য়ে তিনি অব্রাহামের বিশ্বাস পরীক্ষা করবেন| তাই ঈশ্বর ডাকলেন, “অব্রাহাম!”এবং অব্রাহাম সাড়া দিলেন, “বলুন!” 2 তখন ঈশ্বর বললেন, “তোমার একমাত্র পুত্র যাকে তুমি ভালবাস সেই ইসহাককে মোরিয়া দেশে নিয়ে যাও| সেখানে পর্বতগুলির মধ্যে একটির ওপরে তাকে আমার উদ্দেশ্যে বলি দাও| আমি তোমাকে বলব কোন পর্বতের ওপর তুমি তাকে বলি দেবে|” 3 পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অব্রাহাম যাত্রার জন্যে গাধার পিঠে জিন সাজালেন| সঙ্গে ইসহাককে নিলেন, আর নিলেন দুজন ভৃত্যকে| অব্রাহাম হোমের জন্য কাঠ কাটলেন| তারপর ঈশ্বর যেখানে য়েতে বলেছিলেন সেই স্থানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন| 4 তিনদিন চলার পর অব্রাহাম দূরে দৃষ্টিপাত করলেন আর গন্তব্যস্থল দেখতে পেলেন| 5 তখন ভৃত্য দুজনের উদ্দেশ্যে অব্রাহাম বললেন, “গাধাটা নিয়ে তোমরা এখানে অপেক্ষা করো, আমি ছেলেকে নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানটিতে যাব এবং উপাসনা করব| পরে তোমাদের কাছে ফিরে আসব|” 6 অব্রাহাম হোমের জন্যে কেটে আনা কাঠ ছেলের কাঁধে দিলেন| এবং সঙ্গে নিলেন খাঁড়া ও আগুন| তারপর অব্রাহাম ও তাঁর ছেলে দুজনেই উপাসনা সম্পাদন করার জন্যে নির্দিষ্ট স্থানটিতে গেলেন| 7 ইসহাক পিতা অব্রাহামকে বলল, “পিতা!”অব্রাহাম উত্তর দিলেন, “বলো, পুত্র!”ইসহাক বলল, “পিতা! হোমের জন্যে সব আয়োজন দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু হোমের আগে বলি দেওয়ার জন্যে মেষশাবক কোথায়?” 8 অব্রাহাম বললেন, “আমার পুত্র, বয়ং ঈশ্বর বলির জন্যে মেষশাবকের ব্যবস্থা করবেন|”সুতরাং অব্রাহাম আর ইসহাক দুজনে মিলে নির্দিষ্ট স্থানটিতে গেলেন| 9 তাঁরা সেই স্থানটিতে পৌঁছলেন যেখানে ঈশ্বর য়েতে বলেছিলেন| সেখানে অব্রাহাম একটি বেদী তৈরী করলেন| বেদীর উপরে অব্রাহাম কাঠগুলো সাজালেন| তারপর অব্রাহাম তাঁর পুত্র ইসহাককে বাঁধলেন এবং বেদীর উপরে সাজানো কাঠগুলোর উপর তাকে শোয়ালেন| 10 এবার অব্রাহাম খাঁড়া বের করে ইসহাককে বলি দেওয়ার জন্যে তৈরী হলেন| 11 কিন্তু তখন প্রভুর দূত অব্রাহামকে বাধা দিলেন| সেই দূত স্বর্গ থেকে “অব্রাহাম, অব্রাহাম” বলে ডাকলেন|অব্রাহাম থেমে গিয়ে সাড়া দিলেন, “বলুন|” 12 দূত বললেন, “তোমার পুত্রকে হত্যা কোরো না, তাকে কোন রকম আঘাত দিও না| এখন আমি দেখতে পাচ্ছি, তুমি ঈশ্বরকে ভক্তি করো এবং তাঁর আজ্ঞা পালন করো| প্রভুর জন্যে তুমি তোমার একমাত্র পুত্রকে পর্য্ন্ত বলি দিতে প্রস্তুত|” 13 তখন অব্রাহাম একটা মেষ দেখতে পেলেন| একটা ঝোপে তার শিং আটকে গেছে| সুতরাং অব্রাহাম সেই মেষটা ধরে এনে বলি দিলেন| ঐ মেষটাই হল ঈশ্বরের জন্যে অব্রাহামের বলি| আর রক্ষা পেল অব্রাহামের পুত্র ইসহাক| 14 সুতরাং অব্রাহাম ঐ স্থানটির একটা নাম দিলেন, “যিহোবা-য়িরি|”এমন কি আজও লোকেরা বলে, “এই পর্বতে প্রভুকে দেখা যায়|” 15 স্বর্গ থেকে প্রভুর দূত দ্বিতীয়বার অব্রাহামকে ডেকে বললেন, 16 “আমার জন্যে তুমি তোমার একমাত্র পুত্রকেও বলি দিতে প্রস্তুত ছিলে| আমার জন্যে তুমি এত বড় কাজ করেছ বলে আমি তোমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি; আমি, প্রভু নিজেরই দিব্য করে প্রতিশ্রুতি করছি য়ে, 17 আমি তোমাকে অবশ্য আশীর্বাদ করব| আকাশে যত তারা, আমি তোমার উত্তরপুরুষদেরও সংখ্যাও তত করব| সমুদ্রতীরে যত বালি, তোমার উত্তরপুরুষরাও তত হবে| এবং তোমার বংশ তাদের সমস্ত শত্রুদের পরাস্ত করবে| 18 পৃথিবীর প্রত্যেক জাতি তোমার উত্তরপুরুষদের মাধ্যমে আশীর্বাদ পাবে| তুমি আমার আজ্ঞা পালন করেছ বলে তোমার উত্তরপুরুষদের জন্যে আমি একাজ করব|” 19 তখন অব্রাহাম তাঁর ভৃত্যদের কাছে ফিরে গেলেন| তাঁরা সকলে বের্-শেবাতে ফিরে এলেন এবং অব্রাহাম বের্-শেবাতেই থেকে গেলেন| 20 এইসব ঘটনার পরে অব্রাহামের কাছে এই খবর এল, “শোনো, তোমার ভাই নাহোর এবং তার স্ত্রী মিল্কারও এখন সন্তানাদি হয়েছে; 21 প্রথম পুত্রের নাম উষ, দ্বিতীয় পুত্রের নাম বূষ, তৃতীয় পুত্র কমূয়েল হল অরামের পিতা| 22 তারপরে আছে কেষদ, হসো, পিল্দশ, ষিদ্লক এবং বথুযেল|” 23 বথুয়েল হল রিবিকার পিতা| এই আট পুত্রের মাতা হল মিল্কা এবং পিতা হল নাহোর| আর নাহোর হচ্ছে অব্রাহামের ভাই| 24 তাছাড়া দাসী রূমার থেকেও নাহোরের আরও চারজন পুত্র ছিল| এই চার পুত্রের নাম টেবহ, গহম, তহশ এবং মাখা|
1 সারা 127 বছর বেঁচ্ছেিলেন| 2 কনান দেশের কিরিয়থ অর্ব অর্থাত্ হিব্রোণ নগরে তাঁর মৃত্যু হল| অব্রাহাম ভীষণ দুঃখ পেলেন, সারার জন্যে অনেক কাঁদলেন| 3 তারপর স্ত্রীর মৃতদেহ রেখে হেতের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বলতে গেলেন| 4 তিনি বললেন, “দেশ পর্য়টন করতে করতে আপনাদের দেশে এসে আমি পরবাসী হিসেবে বাস করছি| ফলে আমার মৃত স্ত্রীকে কবর দেওয়ার মত আমার কোনও জায়গা নেই| আমি যাতে স্ত্রীকে কবর দিতে পারি তার জন্যে দয়া করে আমায় খানিকটা জায়গা দিন|” 5 হেতেরা উত্তরে বলল, 6 “মহাশয়, আমাদের মধ্যে আপনি ঈশ্বরের মহান নেতাদের একজন| আমাদের শ্রেষ্ঠ জমিতে আপনি আপনার মৃত স্ত্রীকে সমাধিস্থ করতে পারেন| আপনার স্ত্রীকে আপনি আপনার পছন্দমত জায়গাতে সমাধিস্থ করলে কেউ আপনাকে বাধা দেবে না|” 7 অব্রাহাম উঠে দাঁড়িয়ে তাঁদের নমস্কার করলেন| 8 অব্রাহাম তাদের বললেন, “আপনারা সত্যিই যদি আমার মৃত স্ত্রীকে কবর দেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করতে চান তাহলে আমার হয়ে সোহরের পুত্র ইফ্রোণের সঙ্গে কথা বলুন| 9 ইফ্রোণের ক্ষেতের শেষে য়ে মক্পেলার গুহাটা আছে সেটা আমি কিনতে চাই| ইফ্রোণ ঐ গুহার মালিক| যা দাম হয়, সবটাই আমি দেব| আমি চাই য়ে আমার স্ত্রীর কবরের জন্যে য়ে ঐ জায়গা কিনছি আপনারা সবাই তার সাক্ষী থাকুন|” 10 য়াঁদের সঙ্গে অব্রাহাম কথা বলছিলেন তাঁদের মধ্যে ইফ্রোণ উপবিষ্ট ছিলেন| এখন ইফ্রোণ অব্রাহামকে বললেন, 11 “না, মহাশয়, এখানেই ঐ ক্ষেত এবং গুহাটিও আমি আমার লোকেদের সামনে আপনাকে দেব| আপনি যাতে আপনার ইচ্ছা মত আপনার স্ত্রীকে সমাধিস্থ করতে পারেন সেজন্যে ঐ জমি, গুহা আমি আপনাকে দেব|” 12 তখন অব্রাহাম সমবেত হেতের লোকদের সবিনয় নমস্কার করলেন| 13 সকলের উপস্থিতিতে তিনি ইফ্রোণকে বললেন, “কিন্তু আমি ঐ জমির পুরো দাম আপনাকে দিতে চাই| আমার দেওয়া দাম আপনি দয়া করে গ্রহণ করুন, আমি নির্দ্ধিধায় আমার স্ত্রীকে কবর দিই|” 14 উত্তরে ইফ্রোণ অব্রাহামকে বললেন, 15 “মহাশয়, আমার কথা শুনুন| আপনার ও আমার কাছে 10 পাউণ্ড ওজনের রূপোর তো কোন দাম নেই| সুতরাং আপনি জমিটা নিন এবং সেখানে নিশ্চিন্তে আপনার স্ত্রীকে সমাধিস্থ করুন|” 16 অব্রাহাম বুঝতে পারলেন য়ে ইফ্রোণের কথার মধ্যেই জমিটার মূল্য উল্লিখিত রয়েছে| সুতরাং অব্রাহাম ঐ মূল্যই ইফ্রোণকে দিলেন| ইফ্রোণের জন্যে অব্রাহাম 10 পাউণ্ড রূপো ওজন করলেন এবং সেই রূপো বণিককে দিলেন| 17 সুতরাং ইফ্রোণের জমির স্বত্ত্বাধিকারীর পরিবর্তন হল| মম্রির পূর্বদিকে মক্পোলায ঐ জমি অবস্থিত| এখন ঐ জমির স্বত্ত্বাধিকারী হলেন অব্রাহাম| তিনি ঐ জমির অন্তর্গত গুহা এবং সমস্ত বৃক্ষাদির স্বত্ত্বাধিকারী হলেন| সমস্ত নগরবাসী ইফ্রোণ ও অব্রাহামের মধ্যে ঐ চুক্তি সম্পাদন প্রত্যক্ষ করলেন| 18 19 তারপর অব্রাহাম মম্রির (হিব্রোণে) নিকটস্থ জমিতে অর্থাত্ কনান দেশের এক গুহার মধ্যে তাঁর স্ত্রী সারাকে সমাধিস্থ করলেন| 20 অব্রাহাম হেতের জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে ঐ জমি ও জমির মধ্যেকার গুহা কিনলেন| এখন ঐ জমি গুহা হল অব্রাহামের সম্পত্তি এবং ঐ জায়গা তিনি সমাধিস্থল হিসেবে ব্যবহার করতে লাগলেন|
1 অব্রাহাম অত্যন্ত বৃদ্ধ বয়স পর্য্ন্ত জীবিত ছিলেন| অব্রাহাম ও তাঁর কৃত সমস্ত কর্মে প্রভুর আশীর্বাদ ছিল| 2 অব্রাহামের সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার জন্যে একজন পুরানো ভৃত্য ছিল| অব্রাহাম সেই ভৃত্যকে একদিন ডেকে বললেন, “আমার উরুর নীচে হাত দাও| 3 এখন আমার কাছে তুমি একটা প্রতিজ্ঞা করো| স্বর্গ ও মর্য়্তের ঈশ্বর প্রভুর সাক্ষাতে আমায় কথা দাও য়ে কনানের কোন কন্যাকে আমার পুত্র বিয়ে করবে, এরকমটা তুমি কখনও হতে দেবে না| আমরা কনানীয়দের মধ্যে বাস করি বটে, কিন্তু আমার পুত্রের সঙ্গে কোনও কনানীয় কন্যার বিয়ে হতে দেবে না| 4 আমার দেশে আমার স্বজাতির কাছে ফিরে যাও| সেখানে আমার পুত্র ইসহাকের জন্যে পাত্রী খুঁজে বের করে তাকে এখানে নিয়ে এস|” 5 ভৃত্যটি তাঁকে বলল, “এমন তো হতে পারে য়ে কোনও পাত্রী আমার সঙ্গে এদেশে আসতে রাজী হল না| তাহলে কি আমি আপনার পুত্রকে আমার সঙ্গে নিয়ে আপনার জন্মভূমিতে যাব?” 6 অব্রাহাম তাকে বলল, “না! আমার পুত্রকে ঐ দেশে নিয়ে য়েও না| 7 স্বর্গের প্রভু বয়ং ঈশ্বর আমার স্বদেশ থেকে সপরিবারে আমায় এখানে নিয়ে এসেছেন| ঐ দেশ আমার পিতার ও পরিবারের স্বদেশ ছিল| কিন্তু প্রভু কথা দিয়েছেন য়ে এই নতুন দেশ হবে আমার পরিবারের স্বদেশ| প্রভু তোমার আগে তাঁর দূত পাঠাবেন যাতে তুমি আমার পুত্রের জন্য একটি পাত্রী পছন্দ করে তাকে এখানে আনতে পার| 8 কিন্তু যদি সেই পাত্রী তোমার সঙ্গে এই দেশে আসতে না চায় তাহলে তুমি তোমার শপথ থেকে মুক্তি পাবে| কিন্তু তুমি কখনও আমার পুত্রকে সেই দেশে ফিরিযে নিয়ে যাবে না|” 9 সুতরাং ভৃত্যটি তার মনিবের উরুর নীচে হাত দিয়ে সেই রকমই শপথ করল| 10 পরিচারকটি অব্রাহামের দশটি উট নিয়ে সেই স্থান ত্যাগ করল| সঙ্গে নিয়ে গেল নানা ধরণের সুন্দর সুন্দর উপহার| সে গেল নাহোরের নগর মেসোপটেমিযাতে| 11 নগরের বাইরে সেই ভৃত্য জলের কূপের দিকে গেল| সন্ধ্যার সময় নগরের মেয়েরা সেই কূপে জল নিতে বেরিয়ে এল| ভৃত্যটি উটগুলোকে সেখানে হাঁটু গেড়ে বসাল| 12 ভৃত্যটি বলল, “প্রভু, আপনি আমার মনিব অব্রাহামের ঈশ্বর| আজ আমার মনিবের পুত্রের জন্যে একটি য়োগ্য পাত্রী নির্বাচনে আপনি আমায় সাহায্য করুন| অনুগ্রহ করে আমার প্রভু অব্রাহামকে এই দয়া করুন| 13 এখানে কূপের ধারে আমি দাঁড়িয়ে আছি| নগরের তরুণী রমনীরা এই কূপের জল নিতে আসছে| 14 ইসহাকের জন্যে কোন পাত্রীটি উপযুক্ত তা জানার একটা বিশেষ ইঙ্গিত দেখতে পাব বলে এখানে আমি অপেক্ষা করছি| সেই বিশেষ ইঙ্গিতটি হল এই: আমি মেয়েটিকে বলব, ‘তোমার কলসী থেকে আমায় একটু জল দাও|’ সেই মেয়েটিই য়ে উপযুক্ত তা আমি বুঝতে পারব যদি সে বলে, ‘নিন, এই জলে তেষ্টা মেটান| আপনার উটগুলোকে আমি জল দিচ্ছি|’ এরকমটা যদি ঘটে তাহলে আমি বুঝব আপনার কাছ হতে আসা সেটাই প্রমাণ য়ে ঐ মেয়েই ইসহাকের জন্যে সঠিক পাত্রী এবং আমি জানব য়ে আপনি আমার মনিবকে দয়া করেছেন|” 15 ভৃত্য প্রার্থনা শেষ করার আগেই রিবিকা নামে একটি তরুনী কূপের কাছে এল| রিবিকা বথুযেলের কন্যা| বথুযেল ছিল অব্রাহামের ভাই নাহোর ও তার স্ত্রী মিল্কার পুত্র| জল নেওয়ার কলসী কাঁধে নিয়ে রিবিকা কূপের কাছে এল| 16 রিবিকা অসাধারণ সুন্দরী| সে কখনও কোন পুরুষের সঙ্গে ঘুমায নি| সে ছিল কুমারী| কূপের ধারে গিয়ে সে কলসী ভরে জল নিল| 17 তখন সেই ভৃত্য তাড়াতাড়ি তার কাছে গিয়ে বলল, “দারুণ তৃষ্ণা, দয়া করে তোমার কলসী থেকে একটু জল দাও|” 18 রিবিকা সঙ্গে সঙ্গে কাঁধ থেকে কলসী নামিযে তার আঁজলায জল ঢেলে দিয়ে বলল, “এই নিন, তৃষ্ণা মেটান|” 19 তাকে জল খেতে দেওয়ার পরে রিবিকা বলল, “আপনার উটগুলোকেও আমি জল দিচ্ছি|” 20 তখন রিবিকা কলসী খালি করে সবটা জল ঢেলে দিল উটেদের পানপাত্রে| তারপর আবার কূপ থেকে আরও জল আনতে গেল| এভাবে সে সবগুলো উটকেই জল পান করতে দিল| 21 সেই ভৃত্য নীরবে রিবিকার সমস্ত কাজ লক্ষ্য করতে লাগল| সে নিশ্চিত হতে চাইছিল য়ে প্রভু তার প্রার্থনা শুনেছেন কিনা এবং ইসহাকের জন্যে কন্যা সন্ধান সফল হয়েছে কিনা| 22 উটগুলোর জলপান শেষ হলে সে রিবিকাকে একটা 1/4 আউন্স ওজনের সোনার আংটি দিল| তাছাড়া সে এক-একটি 5 আউন্স ওজনের দুখানা সোনার বালাও রিবিকাকে দিল| 23 ভৃত্যটি রিবিকাকে জিজ্ঞেস করল, “তোমার পিতা কে? তোমার পিতার গৃহে কি আমার লোকেদের রাতে থাকার কোনও ব্যবস্থা হতে পারে?” 24 রিবিকা উত্তর দিল, “বথুযেল আমার পিতা| তিনি মিল্কা ও নাহোরের পুত্র|” 25 তারপর সে বলল, “উটগুলোকে খেতে দেওয়ার মত খড় আর আপনাদের ঘুমোতে দেওয়ার মত জায়গা দুটোই আমাদের আছে|” 26 ভৃত্যটি সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত করে প্রভুর উপাসনা করল| 27 সে বলল, “ধন্য প্রভু, আমার মনিব অব্রাহামের ঈশ্বর| আমার মনিবের প্রতি প্রভু দয়া ও বিশ্বস্ততার ব্যবহার করেছেন| প্রভু আমাকে আমার মনিবের আত্মীয়দের বাড়ীতে নিয়ে এসেছেন আমার মনিবের পুত্রের জন্য য়োগ্য পাত্রী খুঁজে বের করার জন্য|” 28 তখন রিবিকা ছুটে গিয়ে যা যা ঘটেছে সেসব তার পরিবারের সবাইকে বলল| 29 রিবিকার এক ভাই ছিল| তার নাম লাবন| সেই আগন্তুক যা কিছু বলেছে, সেইসব রিবিকা যখন বলছিল তখন লাবন মন দিয়ে সব শুনছিল এবং লাবন যখন তার দিদির আঙুলে আংটি আর হাতে বালা দেখল তখন ছুটে বেরিয়ে গিয়ে সেই কূপের ধারে এল| সেই লোকটি তখন কূপের ধারে উটগুলো নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল| 30 31 লাবন বলল, “মহাশয়, আপনাকে আমাদের আলযে স্বাগত জানাই| আপনার এখানে দাঁড়িয়ে থাকার দরকার নেই| আপনাদের বিশ্রামের জন্যে আমি সমস্ত বন্দোবস্ত করছি এবং আপনাদের উটগুলোর জন্যে আমাদের বাড়ীতে জায়গা আছে|” 32 তাই অব্রাহামের ভৃত্য তাদের বাড়ীর ভেতরে গেল| উটগুলোর থেকে বোঝা নামাতে লাবন তাদের সাহায্য করল এবং উটগুলোকে খাবারের জন্য খড়ও দিল| লাবন তারপর সেই ভৃত্য ও তার লোকেদের পা ধোওযার জন্য জল দিল| 33 তারপর লাবন তাদের খাওয়ার জন্য খাবার দিল| কিন্তু ভৃত্যটি খেতে রাজী হল না| সে বলল, “আমি কেন এসেছি তা না বলে আমি খাব না|” তখন লাবন বলল, “তাহলে আমাদের বলুন|” 34 তখন সেই ভৃত্য বলল, “আমি অব্রাহামের পরিচারক| 35 কিন্তু সমস্ত বিষয়েই আমার মনিবকে আশীর্বাদ করেছেন| আমার মনিব এখন এক মহান ব্যক্তি| অব্রাহামকে প্রভু অনেক মেষের পাল এবং প্রচুর গবাদি পশু দিয়েছেন| অব্রাহামের এখন অনেক সোনা, রূপা, অনেক দাসদাসী| অব্রাহামের অনেক উট ও গাধা আছে| 36 আমার মনিবের স্ত্রী ছিলেন সারা| অনেক বয়সে তিনি একটি পুত্রের জন্ম দিলেন এবং আমার মনিব তাঁর সমস্ত ধন-সম্পদ তাঁর এই পুত্রকে দিয়েছেন| 37 আমার মনিব আমায় একটা শপথ নিতে বাধ্য করেছেন| আমার মনিব আমার বললেন, “আমার পুত্রকে তুমি কনানের কোনও কন্যাকে বিয়ে করতে দেবে না| আমরা কনানের লোকেদের মধ্যে বাস করি বটে, কিন্তু আমি চাই না য়ে সে কনানের কোনও কন্যাকে বিয়ে করে| 38 সুতরাং তুমি শপথ করো য়ে তুমি আমার পিতার দেশে যাবে| আমার আত্মীয়স্বজনদের কাছে যাও এবং আমার পুত্রের জন্যে একজন পাত্রী নির্বাচন করো|’ 39 তখন আমি আমার মনিবকে বললাম, ‘সেই পাত্রী আমার সঙ্গে এই দেশে আসতে না চাইতেও পারে|’ 40 কিন্তু আমার মনিব বললেন, “আমি প্রভুর সেবা করেছি এবং সেই একই প্রভু তাঁর দূত পাঠাবেন তোমার সঙ্গে তোমার সাহায়্য়ের জন্য| আমার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যেই তুমি আমার পুত্রের জন্যে পাত্রী খুঁজে পাবে| 41 কিন্তু তুমি যদি আমার পিতার দেশে যাও আর তাঁরা যদি আমার পুত্রের জন্যে মেয়ে দিতে অস্বীকার করেন, তাহলে তুমি এই শপথের দায থেকে মুক্ত হবে|’ 42 “আজ আমি এই কূপের পাড়ে এসে প্রার্থনা করলাম, ‘প্রভু, আপনি আমার মনিব অব্রাহামের ঈশ্বর, দয়া করে আমার এই যাত্রাকে সফল করুন| 43 আমি এই কূপের পাশে দাঁড়িয়ে জল নেওয়ার জন্যে আসা একটি মেয়ের জন্যে অপেক্ষা করব| সে জল নিতে এলে আমি বলব, “দয়া করে তোমার কলসী থেকে আমায় একটু জল পান করতে দাও|” 44 এতে উপযুক্ত পাত্রী একটা বিশেষভাবে উত্তর দেবে| সে বলবে, “এই জল আপনি পান করুন আর আপনার উটগুলোকেও আমি জল পান করতে দেব|” য়ে মেয়ে এইভাবে উত্তর দেবে, আমি জানব, সে-ই আমার মনিবের পুত্রের জন্যে উপযুক্ত পাত্রী হবে যাকে প্রভু নির্বাচন করেছেন|’ 45 “আমার প্রার্থনা শেষ করার আগেই রিবিকা জল নেওয়ার জন্যে কূয়ো তলায় এল| জলে কলসীটা তার কাঁধে ছিল| আমি তার কাছে তৃষ্ণা নিবারণের জন্যে জল চাইলাম| 46 তখনই সে কাঁধ থেকে কলসী নামিযে আমার আঁজলায খানিকটা জল ঢেলে দিল| তারপর সে বলল, ‘এই জল আপনি পান করুন আর আপনার উটগুলোর জন্যে আমি আরও জল দিচ্ছি|’ তখন আমি সেই জল পান করলাম এবং মেয়েটি উটগুলোকেও জল পান করতে দিল| 47 তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তোমার পিতা কে?’ সে বলল, ‘বথুযেল আমার পিতা| তিনি মিল্কা ও নাহোরের পুত্র|’ তখন আমি তাকে আংটি আর বালা জোড়া দিলাম| 48 আর প্রণিপাত করে আমি প্রভুকে ধন্যবাদ জানালাম| আমি প্রভুকে আমার মনিব অব্রাহামের ঈশ্বরকে প্রশংসা করলাম| আমায় সোজা আমার মনিবের ভাইয়ের নাতনির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ জানাই প্রভুকে| 49 এখন আমায় বলুন, আপনি কি আমার মনিবের প্রতি সদয এবং বিশ্বস্ত হয়ে তাঁকে আপনার কন্যাটিকে দেবেন? না কি গররাজী হবেন? আপনি খুলে বলুন যাতে আমি কি করব, না করব ঠিক করতে পারি|” 50 তখন লাবন এবং বথুয়েল উত্তর দিলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, সবই প্রভুর ইচ্ছা অনুসারে হচ্ছে| সুতরাং তোমাকে আমরা এটি বদলাবার জন্য কিছুই বলতে পারি না| 51 তাই রিবিকাকে দিলাম| ওকে নিয়ে যাও| ওর সঙ্গে তোমার মনিবের পুত্রের বিয়ে দাও| প্রভুর এটাই ইচ্ছা|” 52 যখন অব্রাহামের ভৃত্য একথা সে প্রভুর সামনে ভূমিতে প্রণিপাত করল| 53 তখন সে য়েসব উপহার সামগ্রী এনেছিল সেসব রিবিকাকে দিল| সে তাকে খুব সুন্দর সুন্দর জামা কাপড় এবং সোনা ও রূপার নানা অলঙ্কার দিল| তার ভাই এবং মাকেও দিল বহু রকম মূল্যবান সামগ্রী| 54 তারপর তারা খাওয়াদাওযা সেরে সেখানে রাত্রিযাপন করল| পরদিন খুব সকালে উঠে তারা বলল, “এখন আমার মনিবের কাছে আমাদের ফিরে য়েতে হবে|” 55 তখন রিবিকার মা ও ভাই বলল, “রিবিকা আরও কিছুদিন আমাদের কাছে থাকুক| আর দশ দিন আমাদের কাছে থাক| তারপর সে য়েতে পারে|” 56 কিন্তু ভৃত্য তাদের বলল, “আমায় দেরী করিয়ে দেবেন না| প্রভু আমার যাত্রা সফল করেছেন| এবার আমার প্রভুর কাছে তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়া দরকার|” 57 রিবিকার মা ও ভাই বলল, “রিবিকাকে ডেকে আনি - ও কি বলে শোনা যাক্|” 58 তাঁরা রিবিকাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি এঁর সঙ্গে এখনই যেতে চাও?”রিবিকা বলল, “হ্যাঁ, আমি যাব|” 59 সুতরাং তাঁরা অব্রাহামের ভৃত্য ও তার লোকজনের সঙ্গে রিবিকাকে য়েতে দিলেন| রিবিকাকে ছোটবেলা থেকে য়ে দাসী মানুষ করেছে সে-ও তাদের সঙ্গে চলল| 60 যখন রিবিকা যাত্রা শুরু করল তাঁরা তাকে বললেন,“আমাদের বোন, তুমি হও লক্ষ লক্ষ জনের জননী| তোমার উত্তরপুরুষগণ শত্রুদের পরাজিত করে দখল করুক তাদের নগরগুলি|” 61 তারপর রিবিকা ও তার দাসী উটের পিঠে চড়ে অব্রাহামের ভৃত্য ও তার লোকজনদের অনুগমন করল| সুতরাং সেই ভৃত্য রিবিকাকে নিয়ে প্রভু গৃহের পথে যাত্রা করল| 62 ইসহাক তখন বের্-লহয্-রোযী ত্যাগ করে নেগেভে বাস করছিলেন| 63 একদিন সন্ধ্যায় একান্তে ধ্যান করার জন্যে ইসহাক নির্জন প্রান্তরে বেড়াতে গিয়েছিলেন| ইসহাক চোখ তুলে দেখলেন য়ে দূর থেকে উটের সারি আসছে| 64 রিবিকাও ইসহাককে দেখতে পেলেন| তখন সে উটের পিঠ থেকে লাফিয়ে নেমে পড়ল| 65 ভৃত্যকে জিজ্ঞেস করল, “কে ঐ তরুণ মাঠের মধ্যে দিয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে?”ভৃত্য উত্তর দিল, “ঐ আমার মনিবের পুত্র|” শুনে রিবিকা ওড়না দিয়ে তার মুখ ঢাকল| 66 সেই ভৃত্য যা-যা ঘটেছে সব ইসহাককে বলল| 67 তখন ইসহাক মেয়েটিকে তাঁর মায়ের তাঁবুতে নিয়ে গেলেন| সেদিন থেকে রিবিকা হল ইসহাকের স্ত্রী| ইসহাক তাকে খুব ভালবাসলেন| তাকে ভালবেসে ইসহাক মায়ের মৃত্যুর শোকে সান্ত্বনা পেলেন|
1 অব্রাহাম আবার বিবাহ করলেন| তাঁর নতুন স্ত্রীর নাম কটুরা| 2 অব্রাহামের ঔরসে কটুরা সিম্রণ, য়ক্ষণ, মদান, মিদিয়ন, যিশবক এবং শূহরের জন্ম দেন| 3 যক্ষণ ছিলেন শিবা ও দদানের জনক| অশূরীয়, লিযুশ্মীয় আর লটুনীয় অধিবাসীরা ছিল দদানের উত্তরপুরুষ| 4 ঐফা, এফর, হনোক, অবীদ এবং ইল্দারা ছিল মিদিয়নের সন্তানসন্ততি| অব্রাহাম ও কটুরার বিবাহের ফলে এইসব পুত্রদের জন্ম হয়| 5 মৃত্যুর আগে অব্রাহাম তাঁর রক্ষিত দাসীদের গর্ভজাত পুত্রদের নানা রকম উপহার দিয়ে তাদের পূর্ব দেশে পাঠান| তিনি তাদের ইসহাকের কাছ থেকে দূরে পাঠিয়ে দিয়ে তাঁর যা কিছু ছিল সব ইসহাককে দেন| 6 7 অব্রাহাম 175 বছর বয়স পর্য্ন্ত বেঁচে ছিলেন| 8 তারপর অব্রাহাম ক্রমশঃ দুর্বল হয়ে অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন| সুদীর্ঘ ও সুখী জীবন ছিল তাঁর| তিনি মারা গেলেন এবং তাঁকে তাঁর আপনজনের কাছে নিয়ে যাওয়া হল| 9 তাঁর দুই পুত্র| ইসহাক আর ইশ্মাযেল মিলে তাঁর মৃতদেহ মক্পেলার গুহাতে কবর দিল| সোহরের পুত্র ইফ্রোণের জমিতে ঐ গুহা| জায়গাটা ছিল মম্রির পূর্ব দিকে| 10 এই সেই গুহা য়েটা হেতের সন্তানদের কাছ থেকে কিনেছিলেন| সেখানে স্ত্রী সারার কবরের পাশে অব্রাহামকে কবর দেওয়া হল| 11 অব্রাহামের মৃত্যুর পরে ঈশ্বর ইসহাককে আশীর্বাদ করলেন| ইসহাক বের্-লহয়-রোযীতে বসবাস করতে থাকলেন| 12 ইশ্মায়েলের বংশ বৃত্তান্ত এই| অব্রাহাম ও হাগারের পুত্র ছিলেন ইশ্মাযেল| (হাগার ছিলেন সারার মিশরীয দাসী|) 13 ইশ্মাযেলের পুত্রদের নামগুলো হল: প্রথম পুত্র ছিল নবায়োত্, তারপর জন্মায় কেদর, তারপরে যথাক্রমে অদ্বেল, মিষ্মম, 14 মিশ্ম, দুমা, মসা, 15 হদদ, তেমা, যিটুর, নাফীশ এবং কেদমা| 16 এইগুলি হল ইশ্মায়েলের পুত্রদের নাম| প্রত্যেকের এক-একটা ছোট বসতি ছিল এবং প্রত্যেকটি বসতি আস্তে আস্তে শহরে পরিণত হয়| বারোটি পুত্র য়েন বারো জন রাজপুত্র এবং প্রত্যেকের নিজস্ব জনবল| 17 ইশ্মায়েল 137 বছর বেঁচ্ছেিলেন| তারপর তাঁর মৃত্যু হয় এবং তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়| 18 ইশ্মাযেলের উত্তরপুরুষরা সমগ্র মরুভূমি অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে| এই অঞ্চলটি ছিল মিশরের কাছে হুবীলা থেকে শূর পর্য্ন্ত বিস্তৃত এবং এখান থেকে তা বিস্তৃত ছিল অশূরিযা পর্য্ন্ত| ইশ্মাযেলের উত্তরপুরুষেরা প্রায়ই তার ভাইয়ের লোকেদের আক্রমণ করত| 19 এবার ইসহাকের কাহিনী ইসহাক নামে অব্রাহামের এক পুত্র ছিল| 20 যখন ইসহাকের বয়স 40 হল তখন তিনি রিবিকাকে বিয়ে করলেন| রিবিকা ছিলেন পদ্দন্ অরাম অঞ্চলের মেয়ে| তাঁর পিতা বথুযেল এবং অরামীয় লাবন ছিলেন তাঁর ভাই| 21 ইসহাকের স্ত্রীর সন্তানাদি হচ্ছিল না| তাই তিনি প্রভুর কাছে তার স্ত্রীর জন্যে প্রার্থনা করলেন এবং প্রভু তার প্রার্থনা শুনলে রিবিকা গর্ভবতী হলেন| 22 গর্ভবতী অবস্থায় রিবিকা যন্ত্রণা ভোগ করছিলেন কারণ তাঁর গর্ভে দুটি শিশু একে অপরকে জোরে ঠেলাঠেলি করছিল| গর্ভস্থ শিশুর জন্যে রিবিকা অনেক কষ্ট পেতে থাকেন| তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে জানতে চাইলেন, “আমার কেন এমন হচ্ছে?” 23 প্রভু উত্তরে বললেন, “তোমার গর্ভের মধ্যে দুটি জাতি আছে| তুমি দুই মহান বংশের শাসকদের জন্ম দেবে| তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটবে| এক পুত্রের অপেক্ষা অন্য পুত্র শক্তিশালী হবে| ছোট পুত্রের সেবা করবে বড় পুত্র|” 24 যথাসময়ে রিবিকা দুটি যমজ সন্তানের জন্ম দিলেন| 25 প্রথম সন্তানের গায়ের রং ছিল লাল| গায়ের ত্বক ছিল লোমশ বস্ত্রের মত| তাই তার নাম রাখা হল এষৌ| 26 তারপরে যখন দ্বিতীয় সন্তানটির জন্ম হল তখন তার শক্ত মুঠোর মধ্যে এষৌর পায়ের গোড়ালি ধরা ছিল| তাই তার নাম রাখা হল যাকোব| এষৌ এবং যাকোবের জন্মের সময় ইসহাকের বয়স ছিল 60 বছর| 27 ছেলে দুটি বড় হতে লাগল| এষৌ হল একজন দক্ষ শিকারী| সে জঙ্গলে প্রান্তরে ঘুরে বেড়াতে ভালবাসত| কিন্তু যাকোব ছিল শান্ত প্রকৃতির| সে তাঁবুতেই থাকত| 28 ইসহাক এষৌকে ভালবাসতেন| এষৌর শিকার করা পশুর মাংস খেতে তিনি ভালবাসতেন| কিন্তু রিবিকা যাকোবকে ভালবাসতেন| 29 একবার এষৌ শিকার থেকে ফিরে এল| ক্ষুধায সে ছিল ক্লান্ত ও দুর্বল| তখন যাকোব এক হাঁড়ি শিম সেদ্ধ করছিল| 30 এষৌ যাকোবকে বলল, “ক্ষিধের জ্বালায় আমি ক্লান্ত| আমায় এই লাল বীন কিছু খেতে দাও|” (সেজন্যে সবাই তাকে ইদোম বলে|) 31 কিন্তু যাকোব বলল, “তাহলে তুমি আজ বড় পুত্রের অধিকার আমায় বিক্রি করো|” 32 এষৌ বলল, “ক্ষিধের চোটে আমি এমনিতেই আধমরা হয়ে গেছি| মরেই যদি যাই তাহলে পিতার সব সম্পত্তি আমার কোন কাজে লাগবে? তাই আমার ভাগ আমি তোমায় দেব|” 33 কিন্তু যাকোব বলল, “আগে প্রতিজ্ঞা করো য়ে তোমার ভাগ আমায় দেবে|” অতএব যাকোবের কাছে এষৌ প্রতিজ্ঞা করল| এষৌ পিতার সম্পত্তি থেকে নিজের ভাগ যাকোবকে বিক্রি করল| 34 তখন যাকোব এষৌকে রুটি ও খাবার দিল| এষৌ খেয়েদেযে পরিতৃপ্ত হয়ে চলে গেল| সুতরাং এষৌ প্রমাণ করল য়ে বড় পুত্রের অধিকার নিয়ে তার কোনও মাথাব্যথা নেই|
1 একবার দুর্ভিক্ষ হল| অব্রাহামের সময় য়েমন হয়েছিল এই দুর্ভিক্ষটা তেমনই ছিল| তখন ইসহাক পলেষ্টীয়দের অবীমেলকের সঙ্গে দেখা করার জন্যে গরারে গেলেন| 2 প্রভু ইসহাককে দর্শন দিলেন এবং বললেন, “মিশরে য়েও না| আমি তোমায় য়ে দেশে বাস করার পরামর্শ দিচ্ছি সেই দেশে বাস করো| 3 সেই দেশে থাকো এবং আমি তোমার সঙ্গে থাকব| আমি তোমায় আশীর্বাদ করব| এই যত জমিজমা দেখচ সব আমি তোমায় ও তোমার পরিবারকে দেব| তোমার পিতা অব্রাহামকে আমি যা-যা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সে সব কথা আমি রাখব| 4 আকাশের তারার মত তোমার উত্তরপুরুষরা হবে অসংখ্য এবং তোমার পরিবার এই সমস্ত জমির মালিক হবে| তোমার উত্তরপুরুষদের মাধ্যমে পৃথিবীর সমস্ত জাতি আমার আশীর্বাদ পাবে| 5 তোমার পিতা অব্রাহাম আমার কথা, আমার আদেশ, আমার বিধি, আমার নিয়ম সব কিছু পালন করেছিল এবং আমি তাকে যা যা করতে বলেছিলাম সব করেছিল বলে আমি এটা করব|” 6 সুতরাং ইসহাক গরারে থেকে গেলেন এবং সেখানেই বাস করতে লাগলেন| 7 ইসহাকের স্ত্রী রিবিকা ছিল অপূর্ব সুন্দরী| গরারের বাসিন্দারা রিবিকার সম্পর্কে ইসহাককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে লাগল| ইসহাক বললেন, “ও আমার বোন|” রিবিকাকে তার স্ত্রী হিসেবে পরিচয দিতে ইসহাক ভয় পেল| ইসহাকের ভয় হল য়ে রিবিকাকে পাওয়ার জন্যে তারা তাকে হত্যা করতে পারে| 8 তারপর ইসহাক সেখানে বহুদিন থেকেছিলেন| একদিন অবীমেলক জানালা দিয়ে ইসহাক ও তার স্ত্রী রিবিকাকে খেলা করতে দেখলেন| 9 তখন অবীমেলক ইসহাককে ডেকে পাঠালেন| অবীমেলক বললেন, “এই নারী আসলে তোমার স্ত্রী| আমায় কেন মিথ্যে করে বলেছিলে য়ে এ তোমার বোন?”ইসহাক বলল, “আমি ভয় পেয়েছিলাম য়ে একে স্ত্রী বলে পরিচয দিলে ওকে পাওয়ার জন্যে আপনি আমায় হত্যা করবেন|” 10 অবীমেলক বললেন, “আমাদের প্রতি অত্যন্ত অন্যায় অবিচার করেছ| আমাদের মধ্যে কেউ যদি তোমার স্ত্রীকে শয়্য়াসঙ্গিনী করতো তাহলে সে মহাপাপের ভাগী হত|” 11 সুতরাং অবীমেলক তাঁর সমস্ত প্রজাদের সাবধান করে দিলেন| তিনি বললেন, “কেউ এই লোকটির বা এর স্ত্রীর কোন ক্ষতি করবে না| যদি কেউ এদের কোনও ক্ষতি করে তাহলে তার শাস্তি হবে মৃত্যু|” 12 ইসহাক তাঁর ক্ষেতে চাষ করলেন| এবং সে বছর খুব ভাল ফসল হল| প্রভু তাঁকে খুব আশীর্বাদ করলেন| 13 ইসহাক ধনী হলেন| তিনি আরও অনেক ধন উপার্জন করলেন| এভাবে তিনি একজন অত্যন্ত ধনবান ব্যক্তি হলেন| 14 তিনি প্রচুর মেষপাল ও গো-পালের মালিক হলেন| তাঁর বিশাল দাস ও ধন ছিল| সমস্ত পলেষ্টীয় মানুষরা তাঁকে ঈর্ষা করতে লাগল| 15 ফলে অনেক কাল আগে অব্রাহাম ও তাঁর লোকজন য়েসব কূপ খনন করেছিলেন সেগুলো পলেষ্টীয়রা বুজিযে ফেলল| 16 এমনকি অবীমেলক পর্য্ন্ত ইসহাককে বললেন, “আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যাও| তুমি আমাদের অপেক্ষা অনেক বেশী শক্তিশালী হয়ে গেছ|” 17 সুতরাং ইসহাক সেই স্থান ত্যাগ করে সঙ্কীর্ণ গরার নদীর ধারে এসে শিবির স্থাপন করলেন| ইসহাক সেখানে অবস্থান করে সেখানেই বসবাস করতে লাগলেন| 18 এর বহুকাল আগে অব্রাহাম প্রচুর কূপ বা জলাশয খনন করেছিলেন| অব্রাহাম মারা গেলে পলেষ্টীয়রা সেইসব কূপ মাটি দিয়ে বুজিযে ফেলেছিল| 19 তখন ইসহাক ফিরে গিয়ে আবার সেই কূপগুলি খনন করলেন| ইসহাকের ভৃত্যরাও ছোট নদীটির কাছে একটা কূপ খনন করল এবং তারা সেই কূপের মধ্যে একটি জলের ঝর্ণা দেখতে পেল| 20 গরার উপত্যকায় যারা মেষ চরাত তাদের সঙ্গে ইসহাকের লোকজনদের বিবাদ বাধল| তারা বলল, “এই জল আমাদের|” তাই ইসহাক ঐ কূপটির নাম দিলেন এষক| তিনি কূপটির ঐ নাম দিলেন, কারণ ঐখানেই তর্কাতর্কিটা হয়েছিল| 21 ইসহাকের লোকেরা আর একটি কূপ খনন করল| সেই কূপ নিয়ে ইসহাকের লোকেদের সঙ্গে স্থানীয লোকেদের আবার বিবাদ বাধল| তাই ইসহাক ঐ কূপটির নাম দিলেন সিট্ন| 22 সেখান থেকে সরে গিয়ে ইসহাক আবার একটি কূপ খনন করলেন| এবার ঐ কূপটির নাম দিলেন রহোবোত্| ইসহাক বললেন, “এবার প্রভু আমাদের জন্যে একটা জায়গা পেয়েছেন| এখানেই আমরা বহুগুণ হব ও সফল হব|” 23 সেখান থেকে ইসহাক গেলেন বের্শেবাতে| 24 সেই রাত্রে প্রভু ইসহাকের সঙ্গে কথা বললেন| প্রভু বললেন, “আমি তোমার পিতা অব্রাহামের ঈশ্বর| ভয় পেও না| আমি তোমার সঙ্গে আছি এবং তোমায় আশীর্বাদ করছি| তোমার পরিবারকে আমি এক মহান পরিবারে পরিণত করব| আমার বিশ্বস্ত সেবক অব্রাহামের জন্যে আমি একাজ করব|” 25 সুতরাং ইসহাক এক বেদী নির্মাণ করে সেখানে প্রভুর উপাসনা করলেন| ইসহাক সেই জায়গায় তাঁবু স্থাপন করলেন আর তাঁর পরিচারকরা সেখানে কূপ খনন করলো| 26 গরার থেকে অবীমেলক এলেন ইসহাকের সঙ্গে দেখা করতে| অবীমেলকের সঙ্গে তাঁর উপদেষ্টা অহূষত্ এবং তাঁর সৈন্যাধ্যক্ষ ফীকোলও এলেন| 27 ইসহাক জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার কাছে এসেছেন কেন? আগে আপনি আমার সঙ্গে বন্ধুর মত ব্যবহার করেন নি| এমনকি আপনার রাজ্য থেকে আপনি আমায় তাড়িয়ে দিয়েছিলেন|” 28 উত্তরে তাঁরা বললেন, “এখন আমরা জেনেছি য়ে প্রভু আপনার সঙ্গে আছেন| আমরা মনে করি য়ে আমাদের মধ্যে একটা চুক্তি হওয়া উচিত্| আমরা চাই আপনি আমাদের কাছে শপথ নিনি| 29 আমরা আপনাকে কখনও আঘাত করি নি| আপনিও দিব্য করুন য়ে আমাদের কখনও আঘাত করবেন না| আমরা আপনাকে বহিষ্কার করেছিলাম| এখন এটা পরিষ্কার য়ে প্রভু আপনাকে আশীর্বাদ করেছেন|” 30 সুতরাং ইসহাক অভ্য়াগতদের জন্যে এক ভোজসভার আযোজন করলেন| সবাই পরিতৃপ্তির সঙ্গে পানভোজন করলেন| 31 পরদিন খুব সকালে তাঁরা একে অপরের কাছে একটি প্রতিজ্ঞা করলেন| তারপর তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে বিদায নিলেন| 32 সেইদিন ইসহাকের ভৃত্যরা এসে তারা য়ে কূপ খনন করেছিল তার কথা জানাল| তারা বলল, “ঐ কূপের মধ্যে জল পাওয়া গেছে|” 33 তাই ইসহাক ঐ কূপের নাম দিলেন শিবিরা এবং এখনও ঐ নগরী বের্-শেবা নামে পরিচিত| 34 এষৌর যখন 40 বছর বয়স হল তখন সে দুজন হিত্তীয় রমণীকে বিবাহ করল| একজন ছিল বেরির কন্যা য়িহূদীত্| অন্যজন ছিল এলনের কন্যা বাসমত্| 35 এই বিবাহ দুটিতে ইসহাক এবং রিবিকা মানসিকভাবে বিপর্য়স্ত হয়েছিলেন|
1 ইসহাক ক্রমশঃ বৃদ্ধ হলেন, ক্ষীণ হল তাঁর দৃষ্টিশক্তি - আর কিছু ভাল দেখতে পান না| একদিন তিনি বড় পুত্রকে ডাকলেন, “এষৌ!”এষৌ উত্তর দিল, “আমি এখানে|” 2 ইসহাক বললেন, “আমি বৃদ্ধ হয়েছি| শীঘ্রই মারাও য়েতে পারি| 3 তাই তোমার তীরধনুক নিয়ে শিকারে যাও| আমার খাওয়ার জন্যে একটা কিছু শিকার করে আনো| 4 আমি ভালবাসি এখন কোনও খাবার তৈরী কর| আমায় খাবার এনে দাও, আমি খাই| মৃত্যুর আগে তোমায় আশীর্বাদ করে যাই|” 5 তখন এষৌ শিকার করতে বেরিয়ে গেল|এসব কথা ইসহাক যখন এষৌকে বলছিলেন তখন রিবিকা সব শুনছিলেন| 6 রিবিকা তাঁর প্রিয পুত্র যাকোবকে বলল, “শোন, তোমার পিতা তোমার ভাই এষৌকে কি বলছিলেন সব শুনেছি| 7 তোমার পিতা বললেন, ‘আমার খাওয়ার জন্যে একটা জানোয়ার শিকার করে আনো| আমায় রেঁধে দাও, আমি খাই| তাহলে আমি মৃত্যুর আগে তোমায় আশীর্বাদ করব|” 8 এখন শোন বাবা, আমি যা বলি তা করো| 9 আমাদের ছাগলের খোঁযাড়ে যাও, দুটো ছাগল ছানা নিয়ে এস| তোমার পিতা য়েমন মাংস খেতে ভালবাসে তেমন করে আমি রেঁধে দেব| 10 তারপর সেই খাবার পিতার কাছে নিয়ে যাবে| মৃত্যুর আগে তিনি তোমায় আশীর্বাদ করবেন|” 11 কিন্তু যাকোব মা রিবিকাকে বলল, “আমার ভাযের গা ভর্তি লোম| কিন্তু আমার শরীরের ত্বক মসৃণ| 12 পিতা আমায় ছুঁলেই টের পাবেন য়ে আমি এষৌ নই| তাহলে পিতা আমায় আশীর্বাদ দেবেন না| বরং অভিশাপ দেবেন| কেন? কেননা আমি তাঁর সঙ্গে চালাকি করতে গিয়েছিলাম|” 13 সুতরাং রিবিকা তাকে বলল, “যদি তিনি অভিশাপ দেন তবে তা আমার ওপর আসুক| আমি য়েমন বলছি তেমনটি করো| যাও, আমার জন্য ছাগল নিয়ে এস|” 14 তখন যাকোব দুটো ছাগল নিয়ে এসে তার মাকে সেগুলি দিল| তার মা ঠিক য়েভাবে ইসহাক খেতে ভালবাসেন সেই বিশেষ ভাবে ছাগল দুটো রান্না করলেন| 15 তারপর রিবিকা বড় পুত্র এষৌর প্রিয জামাকাপড় নিলেন| 16 আর যাকোবের হাতে ও গলায লাগিয়ে দিলেন ছাগলের চামড়া| 17 তারপর রিবিকা সেই রান্না করা মাংস নিয়ে এসে যাকোবকে দিলেন| 18 যাকোব পিতার কাছে গিয়ে ডাকল, “পিতা|”তার পিতা সাড়া দিলেন, “তুমি কে বাবা?” 19 যাকোব বলল, “আমি তোমার বড় পুত্র এষৌ| তুমি য়েমন বলেছিলে আমি সব তেমনভাবে করে এনেছি| এখন উঠে বসো, তোমার জন্যে যা শিকার করেছি, খাও আগে| আমায় পরে আশীর্বাদ কোরো|” 20 কিন্তু ইস্ হাক তাঁর পুত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি করে এত তাড়াতাড়ি জানোয়ার শিকার করলে?”যাকোব উত্তর দিল, “কারণ প্রভু, তোমার ঈশ্বর আমাকে জানোয়ারগুলি তাড়াতাড়ি খুঁজে পেতে সাহায্য করেছেন|” 21 তখন ইসহাক যাকোবকে বললেন, “কাছে এস, বাবা আমি তোমায় ছুঁযে দেখি, তুমি সত্যিই আমার পুত্র এষৌ কিনা|” 22 সুতরাং যাকোব তার পিতা ইসহাকের কাছে গেল| ইসহাক তার গায়ে হাত বুলিযে বলল, “তোমার গলার স্বর যাকোবের মত শোনাচ্ছে, কিন্তু তোমার হাত এষৌর মত লোমশ|” 23 ইসহাক বুঝতে পারলেন না য়ে এ আসলে যাকোব| কারণ তার হাত এষৌর হাতের মতোই লোমশ| সুতরাং ইসহাক যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন| 24 ইসহাক নিঃসন্দেহ হবার জন্যে আবার জিজ্ঞেস করল, “তুমি সত্যিই আমার পুত্র এষৌ তো?” যাকোব উত্তর দিল, “হ্যাঁ, পিতা, আমিই এষৌ|” 25 তখন ইসহাক বললেন, “আমাকে আমার পুত্রের শিকার করা পশুগুলির থেকে খাবার এনে দাও| আমি সেটা খেয়ে তোমায় আশীর্বাদ করবো|” তখন যাকোব খাবারটা দিল এবং ইসহাক তা খেলেন| তারপর যাকোব কিছু দ্রাক্ষারস দিলে ইসহাক তা পান করলেন| 26 তারপর ইসহাক তাকে বললেন, “কাছে এস, আমায় চুমু দাও|” 27 সুতরাং যাকোব তার পিতার কাছে গিয়ে তাঁকে চুম্বন করল| তখন ইসহাক যাকোবের জামা কাপড়ে এষৌর জামা কাপড়ের গন্ধ পেল এবং তাকে আশীর্বাদ করলেন| ইসহাক বললেন,“য়ে প্রান্তর প্রভুর আশীর্বাদ ধন্য, আমার সন্তান সেই প্রান্তরের গন্ধ বহে| 28 তোমাকে প্রভু প্রচুর বৃষ্টি দিন যাতে প্রচুর ফসল আর দ্রাক্ষারস হয়| 29 তুমি সকলের সেবা পাবে| বহু জাতি তোমায় সেবা করবে এবং তোমার প্রতি নত থাকবে| ভাই জাতিদের ওপরে তোমার প্রভুত্ব বহাল হবে| তোমার মাতার পুত্রগণ তোমার অধীন হবে এবং তারা তোমার আদেশে চলবে| তোমাকে যারা শাপ দেবে তারা হবে অভিশপ্ত, যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে তারা আশীর্বাদ পাবে|” 30 ইসহাক যাকোবকে আশীর্বাদ করা শেষ করলেন| তারপর য়েই যাকোব পিতার কাছ থেকে আশীর্বাদ নিয়ে চলে গেল অমনি এষৌ ফিরে এল শিকার থেকে| 31 পিতা ঠিক য়েমন খেতে ভালবাসে ঠিক সেভাবে এষৌ মাংস রাঁধল| তারপর খাবারটা নিয়ে এল পিতার কাছে| পিতাকে সে বলল, “পিতা, আমি তোমার পুত্র| ওঠো, তোমার জন্যে শিকার করে আমি মাংস রেঁধে নিয়ে এসেছি, খাও, তারপরে আমায় আশীর্বাদ করো|” 32 কিন্তু ইসহাক জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কে?”সে উত্তর দিল, “আমি তোমার পুত্র - তোমার বড় পুত্র এষৌ|” 33 তখন ইসহাক মহা উদ্বিগ্ন হলেন| জিজ্ঞেস করলেন, “তাহলে তুমি আসার আগে কে মাংস রান্না করে এনে দিল আমায়? আমি সমস্ত মাংস খেয়ে তাকে আশীর্বাদ করলাম| এখন সেই আশীর্বাদ ফিরিযে নেওয়ার পক্ষেও ঢ়েব দেরী হয়ে গেছে|” 34 এষৌ তার পিতার কথা শুনল| সে খুব ক্রুদ্ধ ও তিক্ত হয়ে উঠল| সে চিত্কার করে কেঁদে উঠল| পিতাকে বলল, “তাহলে আমাকেও আশীর্বাদ করো, পিতা!” 35 ইসহাক বললেন, “তোমার ভাই আমার সঙ্গে চালাকি করেছে! সে এসে তোমার আশীর্বাদ নিয়ে গেছে!” 36 এষৌ বলল, “তার নাম যাকোব| ওর জন্যে ঐ নামই ঠিক| আমার সঙ্গে ভাই দুবার চালাকি করল| প্রথমবার কৌশলে সে প্রথম সন্তান হিসেবে আমার যা অধিকার ছিল তার থেকে বঞ্চিত করেছে এবং এবার আমার প্রাপ্য আশীর্বাদ থেকে আমাকে বঞ্চিত করল|” তারপর এষৌ জিজ্ঞেস করল, “আমার জন্যে কি তোমার আর কোন আশীর্বাদ অবশিষ্ট নেই?” 37 ইসহাক উত্তর দিলেন, “না, তার জন্যে বড় দেরী হয়ে গেছে| আমি তোমায় শাসন করার অধিকারও যাকোবকে দিয়ে ফেলেছি| আমার আশীর্বাদে সে পাবে তার সমস্ত ভাইদের সেবা| আর আমি তাকে প্রচুর শস্য আর দ্রাক্ষারসের জন্যে আশীর্বাদ দিয়েছি| তোমায় আশীর্বাদ করার জন্যে আর কিছু বাকি নেই|” 38 কিন্তু এষৌ আশীর্বাদের জন্যে পিতাকে পীড়াপীড়ি করে বলল, “পিতা তোমার কাছে কি শুধুমাত্র একটিই আশীর্বাদ আছে?” এষৌ কাঁদতে শুরু করল| 39 তখন ইসহাক বললেন,“তুমি কখনও উর্বর জমি পাবে না, তুমি কখনও পর্য়াপ্ত বর্ষা পাবে না| 40 তোমাকে লড়তে হবে জীবনের জন্যে এবং ভ্রাতার ভৃত্য হবে তুমি| কিন্তু লড়ে তুমি হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন| মুক্তি পাবে তোমার ভ্রাতার শাসন থেকে|” 41 তারপর এই আশীর্বাদের জন্যে এষৌ যাকোবকে ঘৃণা করতে শুরু করল| মনে মনে এষৌ ভাবল, “আমার পিতা শীঘ্রই মারা যাবেন| তার জন্য শোক করার সময় শেষ হবার পরে আমি যাকোবকে হত্যা করব|” 42 রিবিকা জানলেন য়ে এষৌ যাকোবকে হত্যা করার কথা ভাবছে| তিনি যাকোবকে ডেকে পাঠালেন| যাকোবকে তিনি বললেন, “শোন, তোমার ভাই এষৌ তোমায় হত্যা করার কথা ভাবছে| 43 তাই আমি যা বলি তা-ই করো| আমার ভাই লাবন বাস করে হারণে| তার কাছে গিয়ে তুমি লুকিয়ে থাকো| 44 তার কাছে তুমি কিছুদিন থাকো যতদিন না তোমার ভাইয়ের রাগ পড়ে| 45 কিছুদিন পরে তোমার ভাই, তুমি তার প্রতি কি করেছ না করেছ সব ভুলে যাবে| তখন আমি তোমায় ফিরিযে আনার জন্যে একটি ভৃত্য পাঠাব| আমি একই দিনে আমার দু পুত্রকে হারাতে চাই না|” 46 তারপর রিবিকা ইসহাককে বললেন, “তোমার পুত্র এষৌ হিত্তীয়দের কন্যাকে বিয়ে করেছে| এ আমার মোটে ভাল লাগে নি| কেননা তারা আমাদের আপনজন নয়| যাকোবও যদি ঐ মেয়েদের কাউকে বিয়ে করে তাহলে আমি নির্ঘাত মারা যাব|”
1 ইসহাক যাকোবকে ডেকে পাঠালেন এবং তাকে আশীর্বাদ করলেন| তারপর ইসহাক যাকোবকে একটি আজ্ঞা করলেন| তিনি বললেন, “তুমি কখনও কনানের মেয়ে বিয়ে করবে না| 2 তাই এই জায়গা ছেড়ে পদ্দন্-অরামে চলে যাও| তোমার দাদামশায বথূয়েলের কাছে যাও| তোমার মামা লাবনের কন্যাদের কোন একজনকে বিয়ে করো| 3 প্রার্থনা করি য়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করবেন এবং তোমায় বহু সন্তানসন্ততি দেবেন| তুমি যাতে এক মহান জাতির জনক হও তার জন্যে আমি প্রার্থনা করি| 4 য়েভাবে ঈশ্বর অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন সেভাবে তিনি য়েন তোমায় ও তোমার সন্তানসন্ততিকে আশীর্বাদ করেন-এই প্রার্থনা করি এবং আমি প্রার্থনা করি য়ে যে দেশে তুমি বাস করবে সেই দেশ তোমার হবে| ঈশ্বর এই দেশ অব্রাহামকে দিয়েছিলেন|” 5 তখন ইসহাক যাকোবকে পদ্দন্-অরাম নামক স্থানে পাঠালেন| যাকোব গেলেন রিবিকার ভাই লাবনের কাছে| বথুযেল লাবন ও রিবিকার জনক এবং যাকোব ও এষৌর মা হলেন রিবিকা| 6 এষৌ জানতে পারল য়ে তার পিতা ইসহাক যাকোবকে আশীর্বাদ করেছেন| এষৌ জানল য়ে ইসহাক যাকোবকে পদ্দন-অরামে পাঠিয়েছেন সেখানে বিয়ে করার জন্যে| ইসহাক য়ে যাকোবকে কনানের মেয়ে বিয়ে না করার আদেশ দিয়েছেন সে কথাও এষৌ জানল| 7 এষৌ জানল য়ে যাকোব পিতামাতাকে মেনে চলেছে এবং পদ্দন্-অরামে গেছে| 8 এসবের থেকে এষৌ বুঝল য়ে তাদের পিতা ইসহাক চাইতেন না য়ে পুত্ররা কেউ কনানের মেয়েদের বিয়ে করে| 9 এষৌর তখনই দুজন স্ত্রী ছিল| কিন্তু সে ইশ্মায়েলের কাছে গিয়ে আরও একটি বিয়ে করল| এবার সে ইশ্মায়েলের কন্যা মহলত্কে বিয়ে করল| অব্রাহামের আর এক পুত্র ইশ্মায়েল| মহলত্ নবায়োতের বোন| 10 যাকোব বের্-শেবা ছেড়ে হারণে গেল| 11 হারণে যাওয়ার পথে সূর্য়াস্ত হল| তখন যাকোব রাত কাটাবার জন্যে একটা জায়গায় গেল| সেখানে একটা পাথর দেখতে পেয়ে সে তার ওপরে মাথা রেখে ঘুমিযে পড়ল| 12 ঘুমের মধ্যে যাকোব একটা স্বপ্ন দেখল| সে দেখল, মাটি থেকে একটা সিঁড়ি গেছে স্বর্গে| যাকোব দেখল য়ে ঈশ্বরের দূতরা ঐ সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করছে| আর যাকোব দেখল য়ে প্রভু সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন| 13 প্রভু বললেন, “আমিই প্রভু, তোমার পিতামহ অব্রাহামের ঈশ্বর| আমি ইসহাকের ঈশ্বর| য়ে জমিতে তুমি এখন শুয়ে আছ তা আমি তোমাকে দেব| এই জমি আমি তোমাকে এবং তোমার বংশকে দেব| 14 তোমার বহু সংখ্যক উত্তরপুরুষ হবে| তারা পৃথিবীর ধূলোর মতো অসংখ্য হবে| তারা পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়বে| পৃথিবীর সব জাতিরা তোমার এবং তোমার উত্তরপুরুষদের মাধ্যমে আশীর্বাদ পাবে| 15 “আমি তোমার সঙ্গে আছি| তুমি য়ে কোন জায়গায় যাও না কেন আমি তোমাকে রক্ষা করব এবং এই দেশে আবার ফিরিযে আনব| আমি তোমার কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছি তা পূর্ণ না করা পর্য্ন্ত আমি তোমায় ত্যাগ করব না|” 16 যাকোব ঘুম থেকে উঠে বলল, “আমি জানি প্রভু এই জায়গায় রয়েছেন| কিন্তু আমি না ঘুমানো পর্য্ন্ত জানতাম না য়ে তিনি এখানে রয়েছেন|” 17 যাকোব ভয় পেল| সে বলল, “এ এক মহান জায়গা| এই হল ঈশ্বরের গৃহ| এই হল স্বর্গের দ্বার|” 18 যাকোব খুব ভোরে উঠে পড়ল| য়ে পাথরে মাথা রেখে শুয়েছিল তা দাঁড় করিযে স্থাপন করল| তারপর সে সেই পাথরের উপর তেল ঢালল| এইভাবে সে সেই পাথরকে ঈশ্বরের স্মরনার্থে স্মৃতি চিহ্নস্বরূপ করল| 19 সেই জায়গার নাম ছিল লুস কিন্তু যাকোব তার নাম বৈথেল রাখল| 20 এরপর যাকোব এক প্রতিজ্ঞা করে বলল, “যদি ঈশ্বর আমার সহায় থাকেন, যদি তিনি আমাকে এ যাত্রায় রক্ষা করেন, যদি তিনি আমার খাদ্য ও পরণের কাপড় য়োগান, 21 আর যদি আমি শান্তিতে আমার পিতার গৃহে ফিরতে পারি, যদি ঈশ্বর এই সমস্ত কিছুই সাধন করেন তাহলে প্রভুই আমার ঈশ্বর হবেন| 22 এই পাথর আমি স্মৃতিস্তম্ভ রূপে স্থাপন করছি| এটা প্রমাণ করবে য়ে এ জায়গা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে এবং পবিত্র জায়গা| এবং ঈশ্বর আমাকে যা কিছু দেবেন তার দশ ভাগের এক ভাগ অংশ আমি ঈশ্বরকে দেব|”
1 তারপর যাকোব আবার তার যাত্রা পথে চলল| সে পূর্বদিকের দেশে গেল| 2 যাকোব তাকিযে দেখল মাঠে একটা কূপ রয়েছে| কূপের ধারে ছিল তিন পাল মেষ| মেষরা এই কূপের জলই পান করত| একটা বড় পাথর দিয়ে কূপের মুখটা ঢাকা ছিল| 3 পালের সব মেষ জড়ো হলে মেষপালকরা কূপের মুখ থেকে পাথরটা গড়িয়ে দিতো| তখন সব মেষরা জল পান করত| মেষদের জল পান শেষ হলে মেষপালকরা সেই পাথরটা আবার যথাস্থানে গড়িয়ে দিত| 4 সেখানকার মেষপালকদের যাকোব বলল, “ভাইরা, তোমরা কোথা থেকে এসেছ?”তারা উত্তরে বলল, “আমরা হারোণ থেকে এসেছি|” 5 তখন যাকোব বলল, “তোমরা কি নাহোরের পুত্র লাবনকে চেন?”মেষপালকরা উত্তরে বলল, “আমরা তাঁকে চিনি|” 6 তখন যাকোব বলল, “তিনি কেমন আছেন?”তারা বলল, “তিনি ভাল আছেন| সব কিছু ঠিকঠাক রয়েছে| দেখুন, তাঁর কন্যা রাহেল এখন মেষপাল নিয়ে আসছেন|” 7 যাকোব বলল, “দেখ, এখনও দিনের আলো রয়েছে এবং সূর্য় ডুবতে এখনও দেরী| মেষ জড়ো করার সময় তো এখন নয়| তাই তাদের জল পান করিযে মাঠে আবার চরতে দাও|” 8 কিন্তু মেষপালকরা বলল, “সব মেষপাল এক জায়গায় জড়ো না হওয়া পর্য্ন্ত আমরা তা করতে পারি না| তারপর আমরা কূপের মুখ থেকে পাথর সরিয়ে দেব আর সব মেষ জল পান করতে পারবে|” 9 য়ে সময় যাকোব মেষপালকদের সঙ্গে কথা বলছিল, রাহেল তার পিতার মেষপাল নিয়ে এল| (রাহেলের কাজ ছিল মেষদের যত্ন নেওয়া|) 10 রাহেল ছিল লাবনের কন্যা| লাবন ছিলেন যাকোবের মাতার অর্থাত্ রিবিকার ভাই| যাকোব রাহেলকে দেখে এগিয়ে গিয়ে পাথর সরিয়ে তার মামার মেষদের জল দিল| 11 পরে যাকোব রাহেলকে চুমু খেয়ে উঁচু গলায কাঁদতে লাগল| 12 যাকোব রাহেলকে বলল য়ে সে তার পিতার পরিবারের দিক দিয়ে আত্মীয়| রিবিকার পুত্র| তাই রাহেল দৌড়ে বাড়ী গিয়ে তার পিতাকে তা জানাল| 13 লাবন তাঁর বোনের পুত্র যাকোবের কথা শুনলেন| এবার তাই লাবন দৌড়ে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| লাবন তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন এবং নিজের বাড়ীতে নিয়ে এলেন| যা ঘটেছিল তার সব কিছু যাকোব লাবনকে বলল| 14 তখন লাবন বললেন, “তুমি য়ে আমার পরিবারের একজন এ বড়ই আনন্দের!” তাই লাবন যাকোবের সঙ্গে এক মাস কাটালেন. 15 একদিন লাবন যাকোবকে বললেন, “পারিশ্রমিক বিনা আমার জন্যে তোমার এই পরিশ্রম করাটা ঠিক হচ্ছে না| তুমি আমার আত্মীয়, দাস নও| আমি তোমায় কি পারিশ্রমিক দেব?” 16 লাবনের দুটি কন্যা ছিল| বড়টির নাম লেয়া এবং ছোটটির নাম রাহেল| 17 রাহেল সুন্দরী ছিল| লেয়ার চোখ দুটি শান্ত ছিল| 18 যাকোব রাহেলকে ভালোবাসল| যাকোব লাবনকে বলল, “আমি সাত বছর কাজ করব যদি আপনি আমাকে আপনার কনিষ্ঠা কন্যা রাহেলকে বিয়ে করতে দেন|” 19 লাবন বললেন, “অন্য কারও সঙ্গে হওয়ার থেকে তোমার সাথে বিয়ে হওয়াটা ওর পক্ষে মঙ্গল হবে| তাই আমাদের সঙ্গে থেকে যাও|” 20 তাই যাকোব থেকে গেল এবং লাবনের জন্য সাত বছর কাজ করল| কিন্তু রাহেলকে সে ভালবাসত বলে এই সাত বছর সময় তার কাছে অল্প বলে মনে হল| 21 সাত বছর পর যাকোব লাবনকে বলল, “রাহেলকে আমায় দিন, আমি তাকে বিয়ে করব| আপনার কাছে পরিশ্রম করার মেযাদ শেষ হয়েছে|” 22 তাই লাবন সেখানকার সমস্ত লোককে ভোজে নিমন্ত্রিত করলেন| 23 সেই রাত্রে লাবন তাঁর কন্যা লেয়াকে যাকোবের কাছে নিয়ে এলেন| যাকোব ও লেয়া য়ৌন সহবাস করলেন| 24 (লাবন তার দাসী সিল্পাকে তার কন্যার দাসী হবার জন্যও দিলেন|) 25 সকাল বেলা যাকোব দেখলেন তিনি লেয়ার সাথে রাত কাটিযেছেন| যাকোব লাবনকে বলল, “আপনি আমার সঙ্গে চালাকি করেছেন| রাহেলকে বিয়ে করার জন্য আপনার জন্য কত কঠোর পরিশ্রম করেছি, তবে কেন আপনি আমার সঙ্গে এই চালাকি করলেন?” 26 লাবন বললেন, “আমাদের দেশের প্রথা অনুযায়ীবড় কন্যার আগে ছোট কন্যার বিয়ে আমরা দিই না|” 27 কিন্তু বিবাহ উত্সবের পুরো সপ্তাহটা কাটাও আর আমি রাহেলের সঙ্গে তোমার বিয়ে দেব| কিন্তু তুমি আরও সাতবছর আমার সেবা করবে|” 28 সুতরাং যাকোব তাই করলেন এবং বিবাহ অনুষ্ঠানের সপ্তাহটি শেষ করলেন| তখন লাবন তার কন্যা রাহেলকে যাকোবের স্ত্রী হতে দিলেন| 29 (লাবন তার দাসী বিল্হাকে রাহেলের দাসী হিসেবে দিলেন|) 30 সুতরাং যাকোব রাহেলের সঙ্গেও য়ৌন সহবাস করলেন| আর যাকোব রাহেলকে লেয়ার থেকেও বেশী ভালবাসত| যাকোব লাবনের জন্য আরও সাত বত্সর পরিশ্রম করল| 31 প্রভু দেখলেন য়ে যাকোব লেয়ার থেকে রাহেলকে বেশী ভালবাসে| তাই প্রভু লেয়াকে সন্তান প্রসবের জন্য সক্ষম করলেন| কিন্তু রাহেলের সন্তান হল না| 32 লেয়া এক পুত্রের জন্ম দিলেন| তিনি তার নাম রাখলেন রূবেণ| লেয়া তার এই নাম দিলেন কারণ তিনি বললেন, “প্রভু আমার কষ্ট সকল দেখেছেন| আমার স্বামী আমায় ভালবাসেন না| তাই এবার আমার স্বামী আমায় ভালবাসতেও পারেন|” 33 লেয়া আবার গর্ভবতী হলেন এবং তাঁর আর একটি পুত্র হল| তিনি তার নাম রাখলেন শিমিয়োন| লেয়া বললেন, “আমি য়ে ভালবাসা থেকে বঞ্চিত তা প্রভু শুনেছেন তাই তিনি আমাকে এই পুত্র দিয়েছেন|” 34 লেয়া আবার গর্ভবতী হলেন এবং তাঁর আর একটি পুত্র হল| তিনি এই পুত্রের নাম লেবি রাখলেন| লেয়া বললেন, “এবার অবশ্যই আমার স্বামী আমায় ভালবাসবেন| আমি তাকে তিনটি পুত্র দিয়েছি|” 35 এরপর লেয়া আর একটি পুত্রের জন্ম দিলেন| তিনি এই পুত্রের নাম রাখলেন যিহূদা| লেয়া তার এই নাম রাখলেন কারণ তিনি বললেন, “এখন আমি প্রভুর প্রশংসা করব|” এবার লেয়ার আর সন্তান হল না|
1 রাহেল দেখল য়ে সে যাকোবকে কোন সন্তান দিতে পারে নি| রাহেল তাই তার বোন লেয়ার প্রতি ঈর্ষান্বিত হল| তাই রাহেল যাকোবকে বলল, “আমায় সন্তান দিন নতুবা আমি মারা যাব!” 2 যাকোব রাহেলের প্রতি ক্রুদ্ধ হল| সে বলল, “আমি ঈশ্বর নই| ঈশ্বরই তোমার গর্ভ রুদ্ধ করে রেখেছেন|” 3 তারপর রাহেল বলল, “আপনি আমার দাসী বিল্হাকে নিন| তার সাথে শয়ন করুন এবং সে আমার জন্য সন্তান প্রসব করবে| তাহলে আমি তার মাধ্যমে মাতা হতে পারব|” 4 তাই রাহেল বিল্হাকে যাকোবের কাছে পাঠাল| যাকোব বিল্হার সঙ্গে য়ৌন সহবাস করল| 5 বিল্হা গর্ভবতী হয়ে যাকোবের জন্য এক পুত্রের জন্ম দিল| 6 রাহেল বলল, “ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শুনেছেন| তিনি তাই আমার এক পুত্র দিতে মনস্থ করলেন|” তাই রাহেল এই সন্তানের নাম দান রাখল| 7 বিল্হা আবার গর্ভবতী হয়ে দ্বিতীয় পুত্রের জন্ম দিল| 8 রাহেল বলল, “আমি আমার বোনের সঙ্গে ভারী প্রতিদ্বন্দিতা করেছি এবং আমি জিতেছি|” তাই সে সেই পুত্রের নাম দিল নপ্তালি| 9 লেয়া দেখলেন য়ে তার আর সন্তান হবার সম্ভাবনা নেই| তাই তিনি তার দাসী সিল্পাকে য়োকোবকে দিলেন| 10 এবার সিল্পার এক পুত্র হল| 11 লেয়া বললেন, “আমি খুবই সৌভাগ্যবতী|” তাই তিনি এই পুত্রের নাম গাদ রাখলেন| 12 সিল্পা আর একটি পুত্রের জন্ম দিল| 13 লেয়া বললেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত! এখন হতে স্ত্রী লোকেরা আমায় ধন্যা বলবে|” তাই তিনি তার নাম আশের রাখলেন| 14 গম কাটার সময় রূবেণ ক্ষেতে গিয়ে একটি বিশেষ ধরণের ফুল দেখতে পেলেন| রূবেণ সেই ফুলগুলি তার মা লেয়ার কাছে নিয়ে এল| কিন্তু রাহেল লেয়াকে বলল, “তোমার পুত্রের আনা ঐ ফুলের কিছু আমাকে দাও|” 15 লেয়া উত্তরে বললেন, “তুমি এর মধ্যেই আমার স্বামীকে নিয়ে নিয়েছ| এখন তুমি আমার পুত্রের ফুলগুলিও নিতে চাইছ?”কিন্তু রাহেল বলল, “তুমি তোমার পুত্রের আনা ফুল আমায় দিলে আজ রাত্রে আমার স্বামীর সঙ্গে সহবাস করতে পাবে|” 16 ক্ষেত থেকে রাতে যাকোব বাড়ী ফিরল| লেয়া তাকে দেখে তার সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে বাইরে এলেন| তিনি বললেন, “আজ রাতে তুমি আমার সঙ্গে শোবে| আমি তোমার জন্য মূল্য হিসাবে আমার পুত্রের ফুল দিয়ে দিয়েছি|” তাই সেই রাত্রে যাকোব লেয়ার সঙ্গে শয়ন করল| 17 এরপর ঈশ্বরের দয়ায় লেয়া আবার গর্ভবতী হলেন| তিনি পঞ্চম পুত্রের জন্ম দিলেন| 18 লেয়া বললেন, “আমি আমার দাসীকে আমার স্বামীর কাছে পাঠানোর বেতন হিসাবে ঈশ্বর আমাকে এই সন্তান দিলেন|” তিনি সেই পুত্রের নাম ইষাখর রাখলেন| 19 লেয়া আবার গর্ভবতী হয়ে ষষ্ঠ পুত্রের জন্ম দিলেন| 20 লেয়া বললেন, “ঈশ্বর আমাকে অপূর্ব উপহার দিলেন| এখন নিশ্চয়ই যাকোব আমাকে গ্রহণ করবেন কারণ আমি তাকে দুটি পুত্র দিয়েছি|” তাই লেয়া সেই পুত্রের নাম সবূলূন রাখলেন| 21 পরে লেয়া একটি কন্যার জন্ম দিলেন| তিনি তার নাম রাখলেন দীণা| 22 এবার ঈশ্বর রাহেলের প্রার্থনা শুনলেন| ঈশ্বর রাহেলের গর্ভ মুক্ত করলেন| 23 রাহেল গর্ভবতী হয়ে এক পুত্রের জন্ম দিল| রাহেল বলল, “ঈশ্বর আমার লজ্জা দূর করেছেন এবং এক পুত্র দিয়েছেন|” তাই রাহেল ঈশ্বর আমাকে আর একটি পুত্র দিন, একথা বলে তার নাম রাখল য়োষেফ| 24 25 য়োষেফের জন্মের পর যাকোব লাবনকে বলল, “এবার আমাকে আমার বাড়ী ফিরতে দিন| 26 আমাকে আমার স্ত্রী ও পুত্রদের নিয়ে য়েতে দিন| আমি 14 বছর পরিশ্রম করে তাদের আপনার কাছ থেকে লাভ করেছি| আপনি জানেন আমি ভালভাবেই আপনার সেবা করেছি|” 27 লাবন তাকে বললেন, “এখন আমায় কিছু বলতে দাও! আমি জানি তোমার জন্যই প্রভু আমায় মনোনীত করেছেন| 28 আমায় বল তোমার পারিশ্রমিক হিসাবে কি দিতে হবে আর আমি তোমায় তা দেব|” 29 যাকোব উত্তরে বলল, “আপনি জানেন য়ে আমি আপনার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি| আমার তত্ত্বাবধানে আপনার পশুবল ভালই রয়েছে এবং বৃদ্ধি পেয়েছে| 30 যখন আমি এসেছিলাম তখন আপনার অল্পই ছিল| কিন্তু এখন আপনার প্রচুর হয়েছে| প্রতিবার আমি আপনার জন্য কিছু কাজ করলে প্রভু আপনাকে আশীর্বাদ করেছেন| এখন সময় এসেছে আমার নিজের জন্য কাজ করার| সময় এসেছে আমার নিজের গৃহ গাঁথার|” 31 লাবন জিজ্ঞাসা করলেন, “তাহলে আমি তোমায় কি দেব?”যাকোব উত্তরে বলল, “আমি আপনার কাছ থেকে কিছু চাই না| কেবল চাই আপনি আমার শ্রমের বেতন দিন| কেবল এই একটি কাজ করুন; আমি ফিরে গিয়ে আপনার মেষপালের যত্ন নেব| 32 কিন্তু আজকে আমাকে আপনার সমস্ত পশুপালের মধ্যে দিয়ে য়েতে দিন এবং য়ে সমস্ত মেষের গায়ে গোল গোল দাগ এবং ডোরা কাটা দাগ রয়েছে তাদের প্রত্যেককে নিতে দিন| আর সমস্ত কালো ছাগ শিশুও আমাকে নিতে দিন| এবং গোল গোল দাগ ও ডোরা কাটা দাগ রয়েছে এমন সমস্ত স্ত্রী ছাগ শিশুও আমার হোক্| সেই হবে আমার বেতন| 33 তাহলে আমি আপনার প্রতি বিশ্বস্ত কিনা তা সহজেই বুঝতে পারবেন| আপনি এসে আমার পশুপাল দেখতে পারেন| যদি কোন ছাগ চিত্র বিচিত্র না হয় এবং মেষ কালো রঙের না হয় তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন য়ে আমি চুরি করেছি|” 34 লাবন বললেন, “এতে আমার সম্মতি রয়েছে| তুমি যা চাইলে আমরা সেই মত করব|” 35 কিন্তু সেই দিন লাবন সমস্ত চিত্র বিচিত্র পুং ছাগল এবং চিতল স্ত্রী ছাগলগুলিকে লুকিয়ে ফেললেন এবং কালো মেষগুলিকে লুকিয়ে ফেললেন| লাবন তার পুত্রদের সেই সমস্ত পাহারা দিতে বললেন| 36 তাই তার পুত্রেরা চিত্র বিচিত্র সেই সকল পশু নিয়ে তাদের অন্য এক জায়গায় চরিযে নিয়ে তিন দিন পথের দূরত্ব বজায় রাখলেন| বাকী পশু যা পড়ে রইল যাকোব তার যত্ন নিল| কিন্তু সেই পালে চিত্র বিচিত্র অথবা রঙীন কোন পশুই ছিল না| 37 তাই যাকোব ঝাউ ও বাদাম গাছের কচি ডালপালা কাটল এবং ডালের ছাল কিছুটা করে ছাড়াল যাতে ডোরা কাটা দেখায়| 38 যাকোব সেই ডালগুলি পশুদের জল খাওয়ার জায়গার সামনে রাখল| পশুরা সেইস্থানে জল পান করতে এলে 39 সঙ্গমও করল| এরপর সেই ডালের সামনে সঙ্গম করা পশুদের চিত্র বিচিত্র, ডোরাকাটা অথবা কালো শাবক জন্মাল| 40 পশুপালের জন্য সমস্ত পশুর মধ্যে থেকে যাকোব চিত্র বিচিত্র ও কালো পশুদের পৃথক করল| যাকোব তার পশুদের লাবনের পশুদের থেকে আলাদা করে রাখল| 41 য়ে কোন সময় বলবান পশুরা সঙ্গম করলে যাকোব সেই ডালগুলি তাদের সামনে রাখত| বলবান পশুরা সেই ডালপালার সামনে সঙ্গম করত| 42 কিন্তু দুর্বল পশুরা সঙ্গম করলে যাকোব সেখানে ডালগুলি রাখত না| তাই দুর্বল পশুদের শাবকগুলি লাবনের হল| আর বলবান পশুদের শাবকগুলি হল যাকোবের| 43 এইভাবে যাকোব বেশ ধনী হয়ে উঠল| তার অনেক পশু, ভৃত্য, উট এবং গাধা হল|
1 একদিন যাকোব শুনল য়ে লাবনের পুত্ররা কথাবার্তা বলছেন| তারা বলল, “আমাদের পিতার সবকিছুই যাকোব নিয়ে নিয়েছে| যাকোব খুবই ধনী হয়েছে| ওর এই ধনের সবটাই সে আমাদের পিতার কাছ থেকে নিয়েছে|” 2 যাকোব লক্ষ্য করল য়ে লাবন অতীতের মত আর বন্ধুমনোভাবাপন্ন নয়| 3 প্রভু যাকোবকে বললেন, “তোমার পূর্বপুরুষেরা য়ে দেশে বাস করতেন, তোমার সেই নিজের দেশে ফিরে যাও| আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে থাকব|” 4 তাই যাকোব রাহেল ও লেয়াকে সেই মাঠে দেখা করতে বলল| যেখানে সে তার মেষপাল ও ছাগপাল রেখেছিল| 5 যাকোব রাহেল ও লেয়াকে বলল, “আমি দেখছি য়ে তোমাদের পিতা আমার ওপর রেগে গেছেন| অতীতে সব সময় তিনি আমার সঙ্গে বন্ধুত্বের মনোভাব পোষণ করতেন কিন্তু তিনি আর সেরকম নন| কিন্তু আমার পিতা ঈশ্বর আমার সঙ্গে রয়েছেন| 6 তোমরা উভয়েই জান আমি তোমাদের পিতার জন্য আমার সাধ্যমত কঠোর পরিশ্রম করেছি| 7 কিন্তু তোমাদের পিতা আমাকে ঠকিয়েছেন| এই নিয়ে দশবার তিনি আমার বেতন বদলেছেন| কিন্তু এই সকল সময় ঈশ্বর লাবনের সমস্ত চালাকি হতে আমাকে রক্ষা করেছেন| 8 “একবার লাবন বললেন, “বিন্দু চিহ্নিত সমস্ত ছাগল তুমি রাখতে পার| তাই হবে তোমার বেতন|’ তিনি এই কথা বলার পর সমস্ত পশুর বিন্দু চিহ্নিত শাবক জন্মাল| তাই সেসব আমারই হল| কিন্তু তখন লাবন বললেন, ‘সব বিন্দু চিহ্নিত ছাগল আমার| তুমি ডোরা কাটা ছাগগুলি রাখতে পার| সেই হবে তোমার বেতন|’ তিনি একথা বলার পর সমস্ত পশু ডোরাকাটা শাবকের জন্ম দিল| 9 সুতরাং ঈশ্বরই পশুগুলিকে তোমার পিতার কাছ থেকে নিয়ে আমায় দিয়েছেন| 10 “একটি স্বপ্নে আমি দেখলাম, দলের সঙ্গে সঙ্গম করছে য়ে পুরুষ ছাগলরা, তাদেরই গায়ে ডোরাকাটা এবং ছোপমারা| 11 ঈশ্বরের দূত সেই স্বপ্নে আমার সঙ্গে কথা বললেন, “যাকোব!”“আমি উত্তর দিলাম, ‘আজ্ঞে!’ 12 “দূত আমাকে উত্তর দিলেন, “দেখ, কেবল ডোরাকাটা ও বিন্দু চিহ্নিত ছাগলরাই সঙ্গম করছে| আমিই তা ঘটাচ্ছি| লাবন তোমার প্রতি য়ে সমস্ত অন্যায় করেছেন তার সমস্তই আমি দেখেছি| আমি এমনটা করছি যাতে সমস্ত ছাগ শাবক তোমারই হয়| 13 আমি সেই ঈশ্বর যিনি বৈথেলে তোমার কাছে এসেছিলেন| সেই স্থানে তুমি এক বেদী স্থাপন করেছিলে| তুমি সেই বেদীতে ওলিভ তেল ঢেলেছিলে এবং আমার কাছে এক প্রতিজ্ঞা করেছিলে| এখন আমি চাই য়ে তুমি য়ে দেশে জন্মেছিলে সেই দেশে ফিরে যাবার জন্য প্রস্তুত হও|” 14 রাহেল ও লেয়া যাকোবকে উত্তরে বললেন, “আমাদের পিতা তার মৃত্যুর সময় আমাদের জন্য কিছু রেখে যাবেন না| তিনি আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করেন য়েন আমরা বিদেশী| তিনি আমাদের তোমার কাছে বিক্রি করেছেন এবং তারপর য়ে অর্থ আমাদের পাবার কথা তা তিনি খরচ করে ফেলেছেন| 15 16 ঈশ্বর এই সমস্ত ধন পিতার কাছ থেকে নিয়েছেন যার মালিক এখন আমরা এবং আমাদের সন্তানেরা| সেইজন্য ঈশ্বর য়েমনটি বলেছেন সেই মতোই আপনার কাজ করা উচিত্|” 17 সেইজন্য যাকোব যাত্রার জন্য প্রস্তুত হল| সে তার সব পুত্রদের ও স্ত্রীদের উটের পিঠে ওঠাল| 18 তারপর তারা কনান দেশে ফিরে গেল যেখানে যাকোবের পিতা বাস করতেন| যাকোবের সমস্ত পশুপাল তার সামনে সামনে হেঁটে চলল| পদ্দন্-অরামে থাকাকালীন সে য়ে সমস্ত কিছু অর্জন করেছিল তার সব কিছু নিয়ে চলল| 19 সেই সময় লাবন মেষদের লোম ছাঁটতে গেলেন| তিনি সেই কাজে গেলে পরে রাহেল তার ঘরে ঢুকে তার পিতার ঠাকুরগুলোকে চুরি করল| 20 যাকোব অরামীয় লাবনের সঙ্গে চালাকি করল কারণ তার চলে যাবার বিষযে সে তাঁকে জানাল না| 21 যাকোব তার পরিবার ও সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়ল| তারা ফরাত্ নদী পার হয়ে পর্বতময় প্রদেশ গিলিয়দের দিকে রওনা দিলেন| 22 তিন দিন পরে লাবন জানতে পারলেন য়ে যাকোব পালিয়ে গেছে| 23 তাই লাবন তাঁর লোকজন জড়ো করে যাকোবের পেছনে ধাওয়া করে চললেন| সাত দিন পর লাবন যাকোবকে পার্বত্য গিলিয়দ দেশের কাছে দেখতে পেলেন| 24 সেই রাতে ঈশ্বর স্বপ্নে লাবনের কাছে গেলেন| ঈশ্বর বললেন, “সাবধান! যাকোবের সঙ্গে ভেবে চিন্তে কথা বোলো!” 25 পরের দিন সকাল বেলা লাবন যাকোবকে দেখতে পেলেন| যাকোব পর্বতের উপরে তার তাঁবু খাটিয়েছিল| তাই লাবন ও তার লোকজন পর্বতময প্রদেশ গিলিয়দে তাঁদের তাঁবু খাটালেন| 26 লাবন যাকোবকে বললেন, “তুমি কেন আমার সঙ্গে চালাকি করলে? কেন তুমি আমার কন্যাদের যুদ্ধ বন্দীদের মত ধরে নিয়ে গেলে? 27 তুমি আমাকে না জানিয়ে কেন পালালে? যদি আমায় বলতে তবে আমি একটা ভোজের আয়োজন করতাম| বাজনার সাথে নাচ গানের ব্যবস্থাও করতাম| 28 তুমি এমনকি আমার নাতি নাতনিদের চুমু খেতে ও কন্যাদের বিদায় জানাবারও সুয়োগ দিলে না| এইভাবে তুমি খুব অজ্ঞের মত কাজ করেছ| 29 তোমাকে আঘাত করার ক্ষমতা আমার রয়েছে| কিন্তু গত রাতে তোমার পিতার ঈশ্বর আমার স্বপ্নে আমার কাছে এলেন| তিনি আমাকে সাবধান করে দিলেন যাতে তোমার কোন ক্ষতি না করি| 30 আমি জানি তুমি তোমার বাড়ী ফিরে য়েতে চাও আর সেইজন্যই তুমি চলে এসেছ| কিন্তু কেন তুমি আমার ঘর থেকে ঠাকুরগুলোকে চুরি করলে?” 31 যাকোব উত্তরে বলল, “আমি ভয় পেয়েছিলাম তাই আপনাকে না বলে চলে এসেছি! আমি ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আমার কাছ থেকে আপনার কন্যাদের ছিনিয়ে নেবেন| 32 কিন্তু আমি আপনার ঠাকুরগুলো চুরি করি নি| যদি এখানে আমার সঙ্গের কোন ব্যক্তি ঐ ঠাকুরগুলোকে নিয়ে থাকে তবে তাকে হত্যা করতে হবে| আপনার লোকেরাই এই বিষয়ে আমার সাক্ষী হবে| আপনার যা কিছু তা আপনি খুঁজে দেখতে পারেন| যা আপনার তা নিয়ে নিন|” (যাকোব জানতেন না য়ে রাহেল লাবনের ঠাকুরগুলো চুরি করেছে|) 33 তাই লাবন গিয়ে যাকোবের তাঁবু এবং তারপর লেয়ার তাঁবু খুঁজে দেখলেন| তারপর সেই দুই দাসীর তাঁবুও খুঁজে দেখলেন| কিন্তু সেই ঠাকুরগুলোকে তাদের ঘরে খুঁজে পেলেন না| তারপর লাবন রাহেলের তাঁবুর দিকে গেলেন| 34 রাহেল ঠাকুরগুলোকে উটের গদির তলায় লুকিয়ে তার ওপরে বসে ছিলেন| লাবন সমস্ত তাঁবু তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ঠাকুরগুলোকে খুঁজে পেলেন না| 35 রাহেল তার পিতাকে বলল, “পিতা আমার উপর রাগ করবেন না| আমি আপনার সামনে উঠে দাঁড়াতে পারছি না কারণ আমার মাসিক চলছে|” তাই লাবন তাঁবুর ভিতরে দেখলেন কিন্তু তাঁর ঠাকুরগুলো খুঁজে পেলেন না| 36 তখন যাকোব খুব রেগে গিয়ে বলল, “আমি কি দোষ করেছি? কোন আইন ভেঙ্গেছি? কি অধিকারে আপনি আমাকে তাড়া করে থামাতে এসেছেন? 37 আমার যা কিছু রয়েছে তার সবকিছুই আপনি খুঁজে দেখেছেন| কিন্তু আপনার কিছুই খুঁজে পান নি আর যদি পেয়ে থাকেন তবে তা দেখান| সেটা এখানেই রাখুন যাতে আমাদের লোকেরা তা দেখতে পায়| আমাদের লোকেরাই বিচার করুক আমাদের মধ্যে কারা ঠিক| 38 আমি 20 বছর আপনার জন্য কাজ করেছি| এই সময় আপনার কোন মেষশাবক বা ছাগশিশু জন্মাবার সময় মারা যায় নি| আর আমি আপনার পালের কোন মেষ মেরে খাই নি| 39 কোন সময় বন্য পশুর দ্বারা কোন মেষ মারা গেলে আমি সবসময় নিজে আপনার কাছে এসে বলি নি য়ে আমার দোষে এটা হয় নি| কিন্তু দিন রাত আমি ক্ষতি স্বীকার করেছি| 40 দিনের বেলা সূর্য় য়েন আমার শক্তি নিঙড়ে নিত এবং রাতে শীতে ঘুম আমার চোখ থেকে উধাও হয়ে য়েত| 41 আমি 20 বছর ধরে আপনার কাছে দাসের মত কাজ করেছি| প্রথম 14 বছর আমি আপনার দুই কন্যা লাভ করার জন্য খেটেছি| শেষ 6 বছর আমি আপনার পশু লাভ করার জন্য খেটেছি| এবং এই সময় আপনি দশ বার আমার বেতন বদলেছেন| 42 কিন্তু আমার পূর্বপুরুষের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর এবং ইসহাকের ভয়?আমার সঙ্গে ছিলেন| ঈশ্বর আমার সঙ্গে না থাকলে আপনি আমাকে খালি হাতে বিদায দিতেন| কিন্তু ঈশ্বর আমার কষ্ট সকল ও আমার পরিশ্রম দেখলেন| এই জন্যই গত রাতে ঈশ্বর প্রমাণ করেছেন য়ে আমি ঠিক|” 43 লাবন যাকোবকে বললেন, “এই মহিলারা আমারই কন্যা| এই সন্তানেরা ও এই পশুরাও আমারই| যা কিছু দেখছ এ সবই তো আমারই, কিন্তু আমার কন্যাদের ও নাতি নাতনিদের আমার কাছে রাখার জন্য কিছুই করতে পারি না| 44 সেইজন্যে এস তোমার সঙ্গে এক চুক্তি করি| আমাদের এই চুক্তির প্রমাণ স্বরূপ আমরা এক পাথরের থাম স্থাপন করব|” 45 চুক্তির প্রমাণ হিসাবে যাকোব একটা বড় পাথর খুঁজে এনে সেটা স্থাপন করল| 46 সে তার নিজের লোকদেরও পাথর এনে রাশি করে রাখতে বলল| তারপর সেই পাথরের রাশির ধারে বসে খাওয়া দাওযা করল| 47 লাবন সেই স্থানের নাম রাখলেন য়িগর্ সাহদুথা| কিন্তু যাকোব সেই স্থানের নাম দিল গল্-এদ| 48 তখন লাবন বললেন, “পাথরের এই রাশি আমাদের চুক্তি স্মরণ করতে সাহায্য করবে|” এই কারণে যাকোব সেই স্থানের নাম গল্-এদ রাখল| 49 তারপর লাবন বললেন, “আমরা পরস্পরের থেকে দূরে চলে গেলে প্রভু য়েন আমাদের পাহারা দেন|” সেইজন্যে সেই স্থানের নাম মিস্পা রাখা হল| 50 তারপর লাবন বললেন, “মনে রেখো তুমি যদি আমার কন্যাদের আঘাত কর তবে ঈশ্বর তোমাকে শাস্তি দেবেন| তুমি যদি অন্য আর কোন স্ত্রী লোককে বিয়ে কর তবে মনে রেখো ঈশ্বর লক্ষ্য রাখছেন| 51 আমাদের মধ্যে স্থাপিত স্তম্ভ ও এই রাশি করা পাথরগুলো স্মরণ করিযে দেবে আমাদের চুক্তির কথা| 52 আমি কখনই এই পাথরগুলো পার হয়ে তোমার সাথে লড়াই করতে যাবো না এবং তুমিও অবশ্যই পার হয়ে আমার সঙ্গে লড়াই করতে আসবে না| 53 আমরা যদি এই চুক্তি লঙঘন করি তবে অব্রাহামের ঈশ্বর, নাহোরের ঈশ্বর এবং তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বর আমাদের বিচারে দোষী করুন|”যাকোবের পিতা ইসহাক ঈশ্বরকে “ভয়” বলে ডাকতেন| তাই যাকোব সেই নাম ব্যবহার করে প্রতিজ্ঞা করল| 54 তারপর যাকোব সেই পর্বতে একটা পশু বলিদান রূপে উত্সর্গ করল| আর তার আপনজনদের বোজে নিমন্ত্রণ করল| খাওয়া দাওযা শেষ হলে তারা সেই রাতটা পাহাড়েই কাটাল| 55 পরের দিন ভোরে লাবন তাঁর নাতি নাতনিদের ও কন্যাদের চুমু খেয়ে বিদায জানালেন| তিনি তাদের আশীর্বাদ করে ঘরে ফিরে গেলেন|
1 যাকোবও সেই স্থান হতে উঠে চলল| পথে সে ঈশ্বরের দূতগণের দেখা পেল| 2 তাদের দেখে যাকোব বলল, “এ ঈশ্বরের শিবির!” সেই জন্যে সে সেই স্থানের নাম মহনযিম রাখল| 3 যাকোবের ভাই এষৌ থাকত সেযীরে| এই জায়গাটা ছিল পাহাড়ী দেশ ইদোমে| যাকোব এষৌর কাছে বার্তাবাহকদের এই বলে পাঠাল, 4 “এই সব কথা আমার মনিব এষৌকে গিয়ে বলো| আপনার দাস যাকোব বলে: আমি এতগুলি বছর লাবনের কাছে কাটিযেছি| 5 আমার অনেক গরু, গাধা, মেষপাল, লোকজন ও দাসী রয়েছে| মহাশয় আমি এই বার্তা পাঠিয়ে অনুরোধ করছি, আপনি আমাদের গ্রহণ করুন|” 6 বার্তাবাহকরা যাকোবের কাছে ফিরে এসে বলল, “আমরা আপনার ভাই এষৌযের কাছে গিয়েছিলাম| তিনি আপনার সাথে দেখা করতে আসছেন| তাঁর সাথে 400 জন লোক রয়েছে|” 7 এই বার্তায যাকোব ভীত হল| সে তার লোকজনদের দুই দলে ভাগ করল| সে তার মেষপাল, পশুপাল ও উটের পালকে দুই ভাগে ভাগ করল| 8 যাকোব বলল, “যদি এষৌ এসে এক দলকে ধ্বংস করে তবে অপর দল নিশ্চয় পালিয়ে রক্ষা পাবে|” 9 যাকোব বলল, “হে আমার পিতা অব্রাহামের ঈশ্বর, আমার পিতা ইসহাকের ঈশ্বর! প্রভু তুমিই আমাকে আমার দেশে আমার পরিবারের কাছে ফিরে য়েতে বলেছিলে| তুমি বলেছিলে আমার মঙ্গল করবে| 10 তুমি আমার প্রতি কত করুণা করেছ| আমার কত মঙ্গল করেছ| প্রথমবার যখন আমি য়র্দ্দন পার হচ্ছিলাম তখন কেবল পথ চলার লাঠি ছাড়া আমার কাছে কিছুই ছিল না| কিন্তু এখন আমার সব কিছু প্রচুর বলে দুটো দল হয়েছে| 11 দয়া করে আমায় আমার ভাইয়ের হাত থেকে, এষৌর হাত থেকে রক্ষা কর| আমার ভয় হয় য়ে সে আমাদের, এমনকি সন্তানদের সঙ্গে মাযেদেরও হত্যা করবে| 12 প্রভু তুমি আমায় বলেছিলে, ‘আমি তোমার মঙ্গল করব| আমি তোমার বংশধরদের সংখ্যায় সমুদ্রের বালির মত করব যা গুনে শেষ করা যায় না|” 13 সেই স্থানে যাকোব রাত কাটাল| এষৌকে উপহার হিসাবে দেবার জন্য জিনিস গোছাল| 14 যাকোব 200টি ছাগী, 20টি ছাগ, 200টি মেষী ও 20টি মেষ নিল| 15 আরও নিল 30টি উট এবং তাদের বাচ্চা, 40টি গরু, 10টি ষাঁড়, 20টি গর্দ্দভী ও 10টি গর্দ্দভ| 16 যাকোব প্রতিটি পশুপাল তার দাসদের হাতে দিল| তারপর যাকোব তার দাসদের বলল, “প্রতিটি পশুর পাল পৃথক কর| আমার আগে আগে যাও আর প্রতিটি পালের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব রেখো| 17 যাকোব তার দাসদের আজ্ঞা দিল| প্রথম দলের পশু য়ে দাসের হাতে তাকে সে বলল, “যখন আমার ভাই এষৌ এসে তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘এ সব পশু কার? তুমি কোথায় যাচ্ছ? তুমি কার দাস?’ 18 তখন তুমি বলবে, ‘এইসব পশু আপনার দাস যাকোবের| যাকোবই এইসব উপহার হিসাবে আপনার কাছে পাঠিয়েছেন. আর যাকোব নিজেও পেছন পেছন আসছেন|” 19 যাকোব দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং অন্য সব দাসদের ঐ একই কাজ করতে বলল| সে বলল, “এষৌর সঙ্গে দেখা হলে তোমরাও সবাই ঐ একই কাজ করবে| 20 তোমরা বলবে, “এই উপহার আপনার জন্যে আর আপনার দাস যাকোব আমাদের পেছনেই আসছেন|” যাকোব বলল, “যদি আমি এই লোকদের উপহার সমেত আমার আগে পাঠাই তবে হয়তো এষৌ আমায় ক্ষমা করে গ্রহণ করবেন|” 21 তাই যাকোব এষৌকে উপহারগুলি পাঠাল| কিন্তু সেই রাতে যাকোব তাঁবুতে রইল| 22 পরে সেই রাতে উঠে যাকোব সেখান থেকে চলে গেল| সে তার সাথে তার দুই স্ত্রী, দুই দাসী ও তার এগারোটি সন্তানকে নিয়ে য়ব্বোক নদী পার হল| 23 যাকোবের পরিবার নদী পার হয়ে গেলে সে তার সমস্ত জিনিসপত্রও পার হবার জন্য পাঠাল| 24 অবশেষে যাকোব নদী পার হবার জন্য রইল| কিন্তু সে একা পার হবার আগে একজন পুরুষ এসে তার সঙ্গে মল্লয়ুদ্ধ করল| সূর্য় ওঠার আগে পর্য্ন্ত সেই পুরুষটি তার সঙ্গে য়ুদ্ধ করলেন| 25 পুরুষটি যখন দেখলেন তিনি যাকোবকে পরাজিত করতে পারছেন না তখন যাকোবের পাযে আঘাত করলেন; তাতে যাকোরে পাযের হাড় সরে গেল| 26 তারপর সেই পুরুষটি যাকোবকে বললেন, “আমায় য়েতে দাও, সূর্য় উঠছে|”কিন্তু যাকোব বলল, “আপনি আমাকে আশীর্বাদ না করলে আমি আপনাকে য়েতে দেব না|” 27 সেই পুরুষটি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার নাম কি?”যাকোব উত্তর দিল, “আমার নাম যাকোব|” 28 তখন সেই পুরুষটি বললেন, “তোমার নাম যাকোবের পরিবর্তে ইস্রায়েল হবে| আমি তোমার এই নাম রাখলাম কারণ তুমি ঈশ্বরের সঙ্গে ও মানুষের সঙ্গে য়ুদ্ধ করেছ কিন্তু পরাজিত হও নি|” 29 তখন যাকোব তাকে জিজ্ঞেস করল, “দয়া করে বলুন আপনার নাম কি?”কিন্তু সেই পুরুষটি বললেন, “কি জন্য আমার নাম জিজ্ঞেস করছ?” সেই সময়ই পুরুষটি যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন| 30 তাই যাকোব সেই জায়গার নাম পনূয়েল রাখল| যাকোব বলল, “এই স্থানেই আমি ঈশ্বরকে মুখোমুখি দেখলাম কিন্তু তাও প্রাণে বাঁচলাম|” 31 সে পনূয়েল পার হলে সূর্য় উঠল| যাকোব পায়ের জন্য খোঁড়াতে খোঁড়াতে চলল| 32 সেইজন্য আজও ইস্রায়েলীয়রা উরুসন্ধির পেশী ভোজন করে না, কারণ যাকোবের সেই পেশীই আহত হয়েছিল|
1 যাকোব তাকিয়ে দেখলেন এষৌ আসছেন| এষৌ তার সঙ্গে 400 জন লোক নিয়ে আসছিলেন| যাকোব তার পরিবারকে চারটি দলে ভাগ করল| লেয়া এবং তার সন্তানেরা একটি দলে, রাহেল ও য়োষেফ আর একটি দলে এবং দুই দাসী ও তাদের সন্তানেরা আরও দুটি দলে ছিল| 2 যাকোব তার দাসীদের সন্তানদের সামনে রাখল| লেয়া এবং তার সন্তানদের সে তাদের পেছনে রাখল| যাকোব রাহেল ও য়োষেফকে সবশেষে রাখল| 3 যাকোব নিজে এষৌর দিকে এগিয়ে গেল| এর ফলে এষৌর সাথেই প্রথমে তার সাক্ষাত্ হল| যাকোব তার ভাইয়ের দিকে হেঁটে যাবার সময় সাতবার আভূমি প্রণত হল| 4 এষৌ যাকোবকে দেখতে পেয়ে তার সাথে দেখা করার জন্য দৌড়ে গেলেন| এষৌ যাকোবের গলা জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন| তারপর তাঁরা দুজনেই কাঁদলেন| 5 এষৌ তাকিযে সেই স্ত্রীলোক ও শিশুদের দেখতে পেয়ে বললেন, “তোমার সাথে ঐ লোকজনেরা কারা?”যাকোব উত্তরে বললেন, “ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আমাকে এইসব সন্তানসন্ততিদের দিয়েছেন|” 6 তারপর সন্তানদের নিয়ে দুই দাসী এষৌর সঙ্গে দেখা করতে গেল| তারা তাঁর সামনে সশ্রদ্ধ প্রণিপাত করল| 7 এরপর লেয়া ও তার সন্তানরা এষৌর সঙ্গে দেখা করে তাঁর সামনে সশ্রদ্ধভাবে উপুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করল| শেষে রাহেল ও য়োষেফ এষৌর সঙ্গে দেখা করে উপুড় হয়ে প্রণাম করল| 8 এষৌ বললেন, “আমি এখানে আসার সময় য়ে জনসমারোহ দেখতে পেলাম তা এবং এইসব পশুই বা কিসের জন্য?”যাকোব বলল, “ঐ সব আপনার জন্য আমার উপহার| য়েন আপনি আমাকে গ্রহণ করেন|” 9 কিন্তু এষৌ বললেন, “তোমাকে উপহার দিতে হবে না ভাই আমার যথেষ্ট রয়েছে|” 10 যাকোব বলল, “তা না, আমার বিনতি এই যদি সত্যিসত্যি আপনি আমাকে গ্রহণ করে থাকেন তবে আমি য়ে উপহার আপনাকে দিই তা গ্রহণ করুন| আমি আবার আপনার মুখ দেখতে পেয়ে আনন্দিত| য়েন ঈশ্বরেরই মুখ দর্শন করলাম| আপনি য়ে আমাকে গ্রহণ করলেন এতেই আমি খুব খুশী| 11 সেইজন্য বিনয় করি আমি য়ে য়ে উপহার আপনার জন্য এনেছি তা গ্রহণ করুন| ঈশ্বর আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন তাই আমার প্রযোজনের অতিরিক্তই রয়েছে|” এইভাবে যাকোব তার উপহারগুলি স্বীকার করার জন্য এষৌর কাছে বিনতি করল| সেইজন্য এষৌ উপহারগুলি স্বীকার করলেন| 12 তারপর এষৌ বললেন, “এবার তুমি তোমার যাত্রা পথে চলতে পার| আমি তোমার সঙ্গে যাব|” 13 কিন্তু যাকোব তাকে বলল, “আপনি জানেন য়ে আমার শিশুরা দুর্বল এবং আমাকে আমার পশুপাল সম্পর্কে সাবধান হতে হবে| যদি আমি তাদের একদিনে এতদূর য়েতে বাধ্য করি, তবে সব পশুই মারা পড়বে| 14 সেইজন্যে আপনি আগে আগে যান| গবাদিপশু এবং অন্যান্য পশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সন্তানরা যাতে খুব ক্লান্ত না হয়ে পড়ে সেই দিক দেখে আমি খুব ধীর গতিতে যাব| আমি সেযীরে আপনার সঙ্গে দেখা করব|” 15 তাই এষৌ বললেন, “তবে তোমাকে সাহায্য করার জন্য আমার কিছু লোক তোমার কাছে রেখে যাই|”কিন্তু যাকোব বলল, “আপনি বড়ই দয়ালু কিন্তু সেটারই বা প্রয়োজন কি?” 16 সেদিন এষৌ সেয়ীরের পথে যাত্রা শুরু করলেন| 17 কিন্তু যাকোব সুক্কোতে গেল| সেই জায়গায় সে নিজের জন্য একটা গৃহ তৈরী করল আর তার পশুপালের জন্য ছাউনি তৈরী করল| এইজন্য সেই জায়গার নাম রাখা হল সুক্কোত্| 18 যাকোব নিরাপদে পদ্দম্-অরাম হতে যাত্রা করে কনান দেশের শিখিম নগরে এসে উপস্থিত হল| সেই শহরের কাছে এক মাঠের মধ্যে সে শিবির স্থাপন করল| 19 শিখিমের পিতা হামোরের কাছ থেকে যাকোব ঐ মাঠটি 100 রৌপ্য খণ্ড দিয়ে কিনেছিল| 20 যাকোব সেই জায়গায় ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য এক বেদী তৈরী করে তার নাম রাখল, “এল্ ইলোহে, ইস্রাযেলের ঈশ্বর|”
1 দীণা ছিল যাকোব এবং লেয়ার কন্যা| একদিন দীণা সেই জায়গার মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে গেল| 2 হমোর ছিলেন সেই দেশের রাজা, তাঁর পুত্র শিখিম দীণাকে দেখতে পেলেন| শিখিম দীণাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বলাত্কার করলেন| 3 শিখিম দীণার প্রেমে পড়ে তাকে বিয়ে করার জন্য অনুণয করতে লাগলেন| 4 শিখিম তাঁর পিতাকে বললেন, “দয়া করে ওকে আমার জন্যে এনে দাও য়েন আমি বিয়ে করতে পারি|” 5 যাকোব জানতে পারল য়ে ছেলেটি তার কন্যার সাথে ঐ মারাত্মক খারাপ কাজটি করেছে| কিন্তু য়েহেতু তার সব কটি পুত্রই মাঠে পশু চরাতে গিয়েছিল, সেই জন্য তারা ঘরে ফিরে না আসা পর্য্ন্ত তিনি কিছুই করলেন না| 6 সেই সময় শিখিমের পিতা হমোর যাকোবের সঙ্গে কথা বলতে এলেন| 7 যাকোবের পুত্রেরা মাঠেই জানতে পারল কি ঘটেছে| ঘটনা শুনে তারা খুবই রেগে গেল কারণ শিখিম যাকোবের কন্যাকে বলাত্কার করে ইস্রায়েলকে লজ্জায ফেলেছিলেন| শিখিমের করা এই ভয়ঙ্কর ঘটনা শুনতে পেয়েই ভাইয়েরা ক্ষেত থেকে ফিরে এল| 8 কিন্তু হমোর ভাইদের বললেন, “আমার পুত্র শিখিম দীণাকে খুবই চায়| অনুগ্রহ করে ওকে বিয়ে করতে দাও| 9 এই বিবাহ বোঝাবে য়ে তোমাদের সঙ্গে আমাদের এক বিশেষ চুক্তি হয়েছে| তখন আমাদের পুত্ররা তোমাদের কন্যাদের এবং তোমাদের পুত্ররা আমাদের কন্যাদের বিয়ে করতে পারবে| 10 তোমরা আমাদের সঙ্গে এই একই দেশে থাকতে পারবে| তোমরা এখানকার জমির মালিক হবে ও ব্যবসা করতে পারবে|” 11 শিখিম নিজেও যাকোব ও ভাইয়েদের সঙ্গে কথা বললেন| শিখিম বললেন, “দয়া করে আমায় গ্রহণ কর| তোমরা আমাকে যা করতে বলবে তাই-ই করব| 12 যদি তোমরা আমায় কেবল দীণাকে বিয়ে করতে দাও, তবে তোমাদের চাওযা য়ে কোন উপহার আমি তোমাদের দেব| তোমরা যা চাইবে তাই-ই দেব, কেবল দীণাকে বিয়ে করতে দাও|” 13 যাকোবের পুত্ররা শিখিম ও তার পিতাকে মিথ্যা বলব বলে ঠিক করল| ভাইয়েরা তাদের রাগ সামলাতে পারছিল না কারণ শিখিম তাদের বোন দীণার প্রতি এই জঘন্য কাজ করেছিলেন| 14 তাই ভাইয়েরা তাঁকে বলল, “আপনি সুন্নত নন বলে আপনার সঙ্গে আমাদের বোনের বিয়ে দিতে পারি না| যদি আমরা আমাদের বোনকে আপনাকে বিয়ে করতে দিই তা হবে আমাদের পক্ষে এক অপমান| 15 কিন্তু আপনি এই একটি কাজ করলে আমরা তার সঙ্গে আপনার বিয়ে দিতে পারি| আপনার শহরের প্রত্যেকটি পুরুষকে আমাদের মত সুন্নত হতে হবে| 16 তাহলে আপনাদের পুত্ররা আমাদের কন্যাদের এবং আমাদের কন্যারা আপনাদের পুত্রদের বিয়ে করতে পারবে| তাহলে আমরা এক জাতি হব| 17 যদি আপনি সুন্নত হতে অস্বীকার করেন তবে আমরা দীণাকে নিয়ে যাব.” 18 এই চুক্তি হমোর এবং শিখিমকে খুব আনন্দিত করল| 19 দীণার ভাইয়েরা যা করতে বলল তাতে শিখিম খুশী হয়ে রাজী হলেন|শিখিম ছিলেন তাঁর পরিবারে সবচেয়ে সম্মানীয ব্যক্তি| 20 হমোর ও শিখিম তাঁদের শহরের সমাগম স্থানে গেলেন| তাঁরা শহরের পুরুষদের সঙ্গে কথা বললেন| 21 তাঁরা বললেন, “ইস্রাযেলের এই লোকরা আমাদের বন্ধু হতে চায়| তারা আমাদের দেশে বাস করুক ও আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করুক| আমাদের সকলের জন্য য়থেষ্ট জায়গা আমাদের রয়েছে| তাদের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক বিবাহও হতে পারে| আমাদের ছেলেরা তাদের মেয়েদের বিয়ে করতে পারে এবং তাদের মেয়েরা আমাদের ছেলেদের বিয়ে করতে পারে| 22 কিন্তু একটি বিষয আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হবে| আমাদের সব পুরুষকে সুন্নত হতে হবে, য়েমনটি ইস্রাযেলের লোকরা হয়ে রয়েছে| 23 একাজ করলে আমরা তাদের গো-মেষাদির পাল ও পশুর দ্বারা এবং সম্পত্তির দ্বারা ধনী হব| সুতরাং তাদের সঙ্গে আমাদের এই চুক্তি করা উচিত্, তাহলে তারা এখানে আমাদের সঙ্গে থাকবে|” 24 সমবেত সমস্ত লোক হমোর ও শিখিমের কথা শুনে সম্মতি জানাল| আর সব পুরুষরা সেই সময় সুন্নত হল| 25 তিন দিন পরেও সুন্নত হওয়া লোকরা তখনও পীড়িত ছিল| যাকোবের দুই পুত্র শিমিয়োন ও লেবি জানত য়ে ঐ লোকরা এই সময়ে দুর্বল থাকবে| তাই তারা শহরে ঢুকে সেখানকার সমস্ত লোককে হত্যা করল| 26 দীণার ভাই শিমিয়োন ও লেবি এই দুজনে মিলে হমোর ও তার পুত্র শিখিমকে হত্যা করল| তারা শিখিমের বাড়ী থেকে দীণাকে বের করে নিয়ে এল| 27 যাকোবের পুত্ররা শহরের সব কিছু লুঠ করল| শিখিম তাদের বোনের সঙ্গে ভ্রষ্টাচার করার জন্য তারা তখনও রেগে ছিল| 28 তাই ভাইয়েরা সমস্ত পশু, গাধা এবং শহরে ও ক্ষেতে যা কিছু ছিল তার সবই নিয়ে নিল| 29 সেই লোকেদের সর্বস্ব এমনকি তাদের স্ত্রী ও শিশুদের অধিকার করল| 30 কিন্তু যাকোব শিমিয়োন ও লেবিকে বলল, “তোমরা আমায় অনেক বিপদে ফেলেছ| এই অঞ্চলের সমস্ত লোক এখন আমায় ঘৃণা করবে| কনানীয ও পরিষীয় সমস্ত লোকরা আমার বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে| আমরা এখানে অল্প কযেকজন রযেছি| যদি এই জায়গার লোকরা একত্রে আমাদের সঙ্গে য়ুদ্ধ করতে আসে, তবে আমি তো ধ্বংস হবোই এমনকি আমার সমস্ত লোকও আমার সঙ্গে ধ্বংস হবে|” 31 কিন্তু ভাইয়েরা বলল, “ঐ লোকরা আমাদের বোনের সঙ্গে বেশ্যার মত য়ে ব্যবহার করেছে সেটাও কি উচিত্ ছিল? না, ঐ লোকেরা আমাদের বোনের প্রতি অন্যায় করেছে|”
1 ঈশ্বর যাকোবকে বললেন, “বৈথেল শহরে যাও| সেখানে বাস কর আর উপাসনার জন্য একটা বেদী তৈরী কর| স্মরণ কর এলকে| তুমি যখন তোমার ভাই এষৌর কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলে তখন সেখানে এই ঈশ্বরই তোমায় দর্শন দিয়েছিলেন|” 2 তাই যাকোব তার পরিবার ও তার সমস্ত দাসকে বলল, “তোমাদের কাছে কাঠ ও ধাতুর য়ে সমস্ত পুতুল ঠাকুর রয়েছে তার সমস্তই ধ্বংস কর| নিজেদের পবিত্র কর এবং পরিষ্কার কাপড় পর| 3 আমরা এই জায়গা ছেড়ে বৈথেলে যাব| সেখানেই আমি আমার ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে একটি বেদী তৈরী করব, এই ঈশ্বরই সঙ্কটের সময় আমায় সাহায্য করেছিলেন| আমি যেখানেই গিয়েছি সেখানেই এই ঈশ্বর আমার সঙ্গে গিয়েছেন|” 4 সেইজন্য লোকরা বিদেশের সমস্ত ঠাকুরগুলোকে যাকোবের কাছে এনে দিল| তারা যাকোবকে তাদের কানের দুলগুলি এনে দিল| যাকোব এসব কিছু শিখিম শহরের কাছে একটা এলা গাছের তলায় পুঁতে রাখল| 5 যাকোব আর তার পুত্ররা সেই জায়গা পরিত্যাগ করল| সেই স্থানের লোকরা তাদের তাড়া করে হত্যা করতে চেযেছিল| কিন্তু তারা ভীষণ ভয় পেয়ে যাকোবকে আর অনুসরণ করল না| 6 এরপর যাকোব আর তার লোকরা লুসে গেল| লুসের বর্তমান নাম বৈথেল| এটি কনান দেশে অবস্থিত| 7 যাকোব সেই জায়গায় একটি বেদী তৈরী করে তার নাম রাখল “এল্ বৈথেল|” যাকোব এই নাম বেছে নিল কারণ ভাইয়ের কাছ থেকে পালিয়ে যাবার সময় এইখানে ঈশ্বর তাঁর সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন| 8 রিবিকার ভাই দবোরার সেইখানেই মৃত্যু হল| তারা তাকে বৈথেলে একটা অলোন গাছের নীচে কবর দিল এবং সেই জায়গার নাম রাখল অলোন্ বাষুত্| 9 পদ্দন্-অরাম থেকে যাকোব যখন ফিরে এল ঈশ্বর তাঁকে আবার দর্শন দিলেন এবং তাকে আশীর্বাদ করলেন| 10 ঈশ্বর যাকোবকে বললেন, “তোমার নাম যাকোব কিন্তু আমি তোমার অন্য নাম রাখব| এখন থেকে তোমাকে যাকোব বলে ডাকা হবে না, তোমার নাম হবে ইস্রায়েল|” তাই ঈশ্বর তার নাম রাখলেন ইস্রায়েল| 11 ঈশ্বর তাকে বললেন, “আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং আমি তোমায় এই আশীর্বাদ করছি| তোমার অনেক সন্তান-সন্ততি হোক, এক মহাজাতি হয়ে বেড়ে ওঠো| তোমার থেকেই অন্য অনেক জাতি এবং রাজারা উত্পন্ন হবে| 12 আমি অব্রাহাম ও ইসহাককে য়ে দেশ দিয়েছিলাম সেই দেশই এখন তোমায় দিচ্ছি| তোমার পরে তোমার বংশধরদের আমি সেই দেশ দিচ্ছি|” 13 এরপর ঈশ্বর সেই জায়গা থেকে চলে গেলেন| 14 এই স্থানে যাকোব একটি স্মরণস্তম্ভ স্থাপন করল| সেই পাথরের উপরে দ্রাক্ষারস ও তেল ঢেলে যাকোব সেটা পবিত্র করল| এটা ছিল এক বিশেষ জায়গা কারণ এখানেই ঈশ্বর যাকোবের সঙ্গে কথা বলেছিলেন| এবং যাকোব এই জায়গার নাম রাখল বৈথেল| 15 16 যাকোব এবং তার দল বৈথেল ত্যাগ করল| তারা ইফ্রাতে পৌঁছাবার আগেই রাহেলের প্রসবের সময় এল| 17 কিন্তু এইবার প্রসবকালে রাহেলের ভীষণ কষ্ট হল, প্রসব বেদনা তীব্র হয়ে উঠল| রাহেলের ধাত্রী এই দেখে বললেন, “ভয় পেও না রাহেল! তুমি আরেকটি পুত্রের জন্ম দিতে চলেছ|” 18 রাহেল পুত্রটি প্রসব করার সময়ই মারা গেল| মারা যাবার আগে রাহেল পুত্রটির নাম রাখল বিনোনী| কিন্তু যাকোব তার নাম রাখল বিন্যামীন| 19 রাহেলকে ইফ্রাথ যাবার পথেই কবর দেওয়া হল| (ইফ্রাথই বৈত্লেহম|) 20 রাহেলকে সম্মান জানাতে যাকোব তার কবরে একটি স্তম্ভ স্থাপন করল| সেই বিশেষ স্তম্ভটি আজও সেখানে রয়েছে| 21 এরপর ইস্রায়েল আবার তার যাত্রা পথে চললেন| তিনি মিগ্দল এদর দক্ষিণে তাঁর তাঁবু খাটালেন| 22 ইস্রায়েল এই স্থানে অল্পকাল রইলেন| এই স্থানেই রূবেণ তার পিতার দাসী বিল্হার কাছে গেল এবং তার সাথে শয়ন করল| ইস্রায়েল এই খবর জানতে পেরে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন|যাকোবের 12টি পুত্র ছিল| 23 যাকোব এবং লেয়ার পুত্ররা হল: যাকোবের প্রথম জাত পুত্র রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূলূন| 24 যাকোব এবং রাহেলের পুত্ররা হল য়োষেফ ও বিন্যামীন| 25 বিল্হা ছিলেন রাহেলের দাসী| যাকোব ও বিল্হার পুত্ররা হল দান এবং নপ্তালি| 26 সিল্পা ছিলেন লেয়ার দাসী| যাকোব এবং সিল্পার পুত্ররা হল গাদ ও আশের|পদ্দন্-অরামে যাকোবের এই কটি পুত্রের জন্ম হয়| 27 যাকোব কিরিযথ অর্ব্বয স্থিত মম্রি নামক স্থানে তার পিতা ইসহাকের কাছে গেলেন| এই জায়গায়ই অব্রাহাম ও ইসহাক বাস করতেন| 28 ইসহাক 180 বত্সর বেঁচে ছিলেন| 29 এরপর ইসহাক বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ু হয়ে মারা গেলেন| তার দুই পুত্র এষৌ ও যাকোব তার পিতাকে য়ে স্থানে কবর দেওয়া হয়েছিল সেইখানেই তাকে কবর দিলেন|
1 এষৌর (ইদোম) বংশ বৃত্তান্ত এই| 2 এষৌ কনান দেশের এক স্ত্রীলোককে বিয়ে করেন| এষৌর স্ত্রীরা ছিলেন: হিত্তীয়, এলোনের কন্যা আদা, অনার কন্যা অহলীবামা, অনা ছিলেন হিব্বীয় সিবিয়োনের পৌত্রী| 3 এবং ইশ্মায়েলের কন্যা বাসমত্, বাসমতের বোনের নাম নবায়োত| 4 এষৌ এবং আদার পুত্রের নাম ইলীফস| বাসমতের পুত্রের নাম ছিল রূযেল| 5 অহলীবামার তিনটি পুত্রের নাম য়িযূশ, যালম ও কোরহ| এষৌর এই পুত্ররা কনান দেশে জন্মেছিলেন| 6 এষৌ এবং যাকোবের প্রচুর সম্পত্তি এবং বহু লোকজন হয়ে যাবার জন্য তাদের পক্ষে একসঙ্গে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠল| তাদের প্রচুর পশুপাল ছিল বলে সেই জমিটি, যেখানে তারা থাকত, তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারত না| তাই এষৌ তার ভাই যাকোবের কাছ থেকে চলে গেলেন| এষৌ তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, সমস্ত দাসী, গরু এবং অন্যান্য পশু এবং কনান দেশে তার আর যা কিছু ছিল সব নিয়ে পর্বতময প্রদেশ সেয়ীরে চলে গেলেন| (এষৌ ইদোম নামেও পরিচিত এবং ইদোম সেয়ীর দেশের অপর নাম|) 7 8 9 এষৌ হলেন ইদোমীয়দের পূর্বপুরুষ| পার্বত্য সেয়ীর (ইদোম) প্রদেশে বসবাসকারী এষৌর পরিবারগোষ্ঠীর নামগুলি: 10 এষৌ এবং আদার পুত্র ইলীফস| এষৌ এবং বাসমতের পুত্র রূযেল| 11 ইলীফসের পাঁচটি পুত্র ছিল: তৈমন, ওমার, সফো, গযিতম ও কনস| 12 তিম্না নামে এষৌর একজন দাসীও ছিল| তিম্না ও ইলীফসের পুত্রের নাম অমালেক| 13 রূয়েলের চার পুত্রের নাম নহত্, সেরহ, শল্ম ও মিসা| এরা ছিল এষৌর স্ত্রী বাসমতের নাতি| 14 এষৌর তৃতীয় স্ত্রীর নাম ছিল অহলীবামা, ইনি ছিলেন অনার কন্যা| (অনা ছিলেন সিবিয়োনের পুত্র|) এষৌ এবং অহলীবামার সন্তানরা হল: য়িযূশ, বালম ও কোরহ| 15 এষৌ হতে উত্পন্ন পরিবারগোষ্ঠীগুলি হল নিম্নরূপ:এষৌর প্রথম পুত্র ইলীফস থেকে উত্পন্ন তৈমন, ওমার, সফো, কনস, 16 কোরহ, গযিতম ও অমালেক|এই সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী এষৌর স্ত্রী আদা থেকে উত্পন্ন| 17 এষৌর পুত্র রূয়েল ছিলেন নহত্, সেরহ শল্ম ও মিসার পিতা|এই সমস্ত পরিবারের মা ছিলেন এষৌর স্ত্রী বাসমত্| 18 এষৌর স্ত্রী অহলীবামা, অনার কন্যা, য়িযূশ, বালম ও কোরহের জন্ম দিলেন| ঐ তিনজন ছিলেন তাদের পরিবারের পিতা| 19 এষৌ হতে উত্পন্ন ঐ পুরুষরা প্রত্যেকে ছিলেন তাঁদের নিজ পরিবারগোষ্ঠীর নেতা| 20 হোরীয় সেয়ীরের এই পুত্ররা সেই দেশে বাস করত| এরা হল লোটন, শোবল, শিবিযোন, অনা, দিশোন, এত্সর, ও দীশন| 21 এই পুত্ররা ছিল ইদোম দেশে সেয়ীর হতে আসা হোরীয় পরিবারের গোষ্ঠীর নেতাসকল| 22 লোটন ছিলেন হোরি এবং হেমনের পিতা| (তিম্না ছিলেন লোটনের বোন|) 23 শোবল ছিলেন অল্ বন, মানহত্, এবল, মফো ও ওনমের পিতা| 24 সিবিয়োনের দুই পুত্র ছিল অযা ও অনা| (অনাই সেই জন যিনি তাঁর পিতার গাধাদের চরাবার সময় মরুভূমিতে উষ্ণ প্রস্রবণ খুঁজে পেয়েছিলেন|) 25 অনা ছিলেন দিশোন ও অহলীবামার পিতা| 26 দিশোনের চার পুত্র ছিল| তাদের নাম: হিম্দন, ইশ্বন, যিত্রণ ও করান| 27 এত্সরের তিন পুত্র ছিল| তাদের নাম বিল্হন, সাবন ও আকন| 28 দীশনের দুই পুত্র ছিল| তাদের নাম উষ ও অরাণ| 29 হোরীয পরিবারগুলির দলপতিদের নামগুলি এইরকম: লোটন, শোবল, সিবিযোন, 30 অনা, দিশোন, এত্সর ও দীশোন| সেয়ীর দেশে য়ে পরিবারগুলি বাস করত, এই লোকেরা ছিল তাদের দলপতিগণ| 31 সেই সময় ইদোমে রাজারা রাজত্ব করতেন| ইস্রায়েলে রাজ শাসন চালু হবার বহু পূর্বেই ইদোমে রাজারা রাজত্ব করতেন| 32 যিয়োরের পুত্র বেলা ইদোম দেশে রাজত্ব করেন, তার রাজধানীর নাম দিন্হাবা| 33 বেলার মৃত্যুর পর য়োবব রাজা হলেন| য়োবব ছিলেন বস্রা নিবাসী সেরহের পুত্র| 34 য়োববের মৃত্যুর পর হূশম রাজত্ব করলেন| হূশম ছিলেন তৈমন দেশীয়| 35 হূশমের মৃত্যুর পর বেদদের পুত্র হদদ সেই নগর শাসন করলেন| (হদদই মোয়াব দেশে মিদিয়নদের পরাজিত করেছিলেন| হদদ এসেছিলেন অবীত্ শহর থেকে| 36 হদদের মৃত্যুর পর সম্ল সেই দেশ শাসন করতে থাকেন| সম্ল এসেছিলেন মম্রেকা থেকে| 37 সম্লের মৃত্যুর পর শৌল সেই দেশ শাসন করতে থাকেন| শৌল এসেছিলেন ফরাত্ নদীর ধারে স্থির রহোবোত্ থেকে| 38 শৌলের মৃত্যুর পর বাল্হানন সেই দেশে রাজত্ব করেন| বাল্হানন ছিলেন অক্বোরের পুত্র| 39 বাল্হাননের মৃত্যুর পর হদর সেই দেশে রাজত্ব করেন| হদর ছিলেন পাযু শহরের লোক| হদরের স্ত্রীর নাম মহেটবেল; ইনি ছিলেন মট্টেদের কন্যা| (মট্টেদের পিতার নাম মেষাহবের|) 40 এষৌ ছিলেন ইদোম পরিবারগুলির পিতা| ইদোম পরিবারগুলি হল তিম্ন, অল্বা, য়িথেত্, অহলীবামা, এলা, দীনোন, কনস, তৈমন, মিব্মস, মগদীয়েল ও ঈরম| এই পরিবারগুলির নাম অনুসারেই তাদের বসতি স্থানের নাম হল| 41 42 43
1 যাকোব কনান দেশেই বাস করতে লাগল| এই সেই দেশ যেখানে পূর্বে তার পিতা বাস করতেন| 2 যাকোবের পরিবারের বৃত্তান্ত এইরকম|য়োষেফ তখন 17 বছর বযস্ক যুবক| তার কাজ ছিল মেষ, ছাগলের তত্ত্বাবধান করা| য়োষেফ এই কাজ করতেন তার ভাইয়েদের সঙ্গে অর্থাত্ বিল্হা ও সিল্পার সন্তানদের সঙ্গে| (বিল্হা ও সিল্পা তাঁর সত্ মা ছিলেন|) ভাইয়েরা মন্দ কাজ করলে য়োষেফ তা তাঁর পিতাকে এসে জানাতেন| 3 য়োষেফ ছিলেন ইস্রায়েলের বৃদ্ধাবস্থার সন্তান| এই জন্য ইস্রায়েল তার অন্যান্য পুত্রদের চেযে য়োষেফকেই বেশী ভালবাসতেন| যাকোব তাকে একটা বিশেষ জামা উপহার দিয়েছিল| জামাটি ছিল লম্বা এবং বেশ সুন্দর| 4 য়োষেফের ভাইয়েরা দেখল য়ে তাদের পিতা তাদের চাইতে য়োষেফকেই বেশী ভালবাসেন| এইজন্য তারা তাকে ঘৃণা করতে লাগল| তারা য়োষেফের সাতে বন্ধুভাবে কথা বলতেও চাইল না| 5 একদিন য়োষেফ একটা স্বপ্ন দেখলেন| পরে তিনি তার ভাইদের সেই স্বপ্নটা বললেন| এরপর তার ভাইয়েরা তাকে আরও ঘৃণা করতে থাকল| 6 য়োষেফ বললেন, “আমি একটা স্বপ্ন দেখেছি| 7 দেখলাম আমরা সকলে ক্ষেতে কাজ করছি| আমরা সকলে গমের আঁটি বাঁধছিলাম, এমন সময় আমার আঁটিটা উঠে দাঁড়াল| আর আমার আঁটির চারপাশে গোল করে ঘিরে থাকা তোমাদের আঁটিগুলো একে একে আমারটিকে প্রণাম জানাল|” 8 তার ভাইয়েরা বলল, “তুমি কি মনে কর এর অর্থ তুমি আমাদের রাজা হয়ে আমাদের উপর রাজত্ব করবে?” তার ভাইয়েরা তাদের সম্বন্ধে দেখা এই স্বপ্নের জন্য তাকে আরও ঘৃণা করতে লাগল| 9 এরপর য়োষেফ আরেকটি স্বপ্ন দেখে সেই স্বপ্ন সম্বন্ধে তার ভাইয়েদের বললেন, “আমি আরেকটি স্বপ্ন দেখেছি| দেখলাম সূর্য়, চাঁদ এবং এগারোটি তারা আমাকে প্রণাম করছে|” 10 য়োষেফ তাঁর পিতাকেও এই স্বপ্নটি সম্বন্ধে বললেন| কিন্তু তাঁর পিতা এর সমালোচনা করে বললেন, “এ কি ধরণের স্বপ্ন? তুমি কি বিশ্বাস কর য়ে তোমার মা, তোমার ভাইয়েরা, এমনকি আমিও তোমায় প্রণাম করব?” 11 য়োষেফের ভাইয়েরা তাঁকে ঈর্ষা করত| কিন্তু য়োষেফের পিতা সেসব মনে রাখলেন আর ভেবে অবাক হলেন যে এর অর্থ কি হতে পারে| 12 একদিন য়োষেফের ভাইয়েরা শিখিমে গেল তাদের পিতার মেষ চরাতে| 13 যাকোব য়োষেফকে বলল, “শিখিমে যাও| সেখানে তোমার ভাইয়েরা আমার মেষ চরাচ্ছে|”য়োষেফ উত্তর করলেন, “আমি যাবো|” 14 য়োষেফের পিতা বললেন, “যাও গিয়ে দেখ তোমার ভাইয়েরা নিরাপদে আছে কিনা| তারপর ফিরে এসে আমাদের জানিও মেষদের অবস্থা কেমন|” এইভাবে য়োষেফের পিতা তাকে হিব্রোণ উপত্যকা থেকে শিখিমে পাঠালেন| 15 শিখিমে য়োষেফ পথ হারালে একজন লোক তাঁকে মাঠে ঘুরে বেড়াতে দেখল| সেই লোকটি বলল, “তুমি কি খুঁজে বেড়াচ্ছ?” 16 য়োষেফ উত্তর দিলেন, “আমি আমার ভাইদের খোঁজ করছি| বলতে পারেন তারা তাদের মেষ নিয়ে কোথায় গেছে?” 17 সেই লোকটি বলল, “তারা তো চলে গেছে| আমি তাদের দোথনে যাবার কথা বলতে শুনেছিলাম|” তাই য়োষেফ তার ভাইদের খুঁজতে গেলেন এবং দোথনে তাদের খুঁজে পেলেন| 18 য়োষেফের ভাইয়েরা তাকে দূর থেকে আসতে দেখে তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করল| 19 ভাইয়েরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “ঐ দেখ স্বপ্নদর্শক য়োষেফ আসছে| তাকে মেরে ফেলার 20 এই তো সুয়োগ| তাকে আমরা য়ে কোন একটা খালি কূপের মধ্যে ফেলে দিয়ে পিতাকে গিয়ে বলতে পারি য়ে এক বুনো জন্তু তাকে মেরে ফেলেছে| এইভাবে আমরা ওকে দেখাব য়ে তার স্বপ্নগুলো অসার|” 21 কিন্তু রূবেণ য়োষেফের প্রাণ বাঁচাতে চাইল| 22 সে বলল, “আমরা তাকে হত্যা করব না| এস, আমরা তাকে হত্যা না করে বরং বিনা আঘাতে ঐ শুকনো কূপের মধ্যে ফেলে দিই|” রূবেণের পরিকল্পনা ছিল য়োষেফকে এইভাবে উদ্ধার করে তার পিতার কাছে ফেরত পাঠানোর| 23 য়োষেফ তার ভাইদের কাছে এলে তারা তাকে আক্রমণ করে তার সুন্দর লম্বা জামাটা ছিঁড়ে ফেলল| 24 এরপর তারা তাকে ধরে ছুঁড়ে দিল এক শুকনো কূপের মধ্যে| 25 য়োষেফ যখন কূপের মধ্যে, সেই সময় তার ভাইয়েরা খেতে বসল| এইসময় তারা একদল বণিককে দেখতে পেল যারা গিলিয়দ থেকে মিশরে যাত্রা করছিল| তাদের উটগুলো বহন করছিল বহু রকম মশলা ও ধন দৌলত| 26 তাই যিহূদা তার ভাইয়েদের বলল, “আমাদের ভাইকে হত্যা করে আর তার মৃত্যুর সংবাদ গোপন করে আমাদের কি লাভ হবে? 27 এর থেকে লাভ হবে যদি আমরা তাকে এই বণিকদের কাছে বিক্রী করে দিই| এভাবে আমরা আমাদের নিজের ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য দোষীও হব না|” অন্য ভাইয়েরাও সম্মতি জানাল| 28 মিদিয়নীয় বণিকরা কাছে আসতেই ভাইয়েরা য়োষেফকে কূপ থেকে তুলে আনলো| তারা তাকে 20টি রৌপ্যমুদ্রার বিনিময়ে বিক্রী করে দিল| বণিকরা এবার তাকে মিশরে নিয়ে চলল| 29 এই সময় রূবেণ সেখানে তার ভাইয়েদের সঙ্গে ছিল না| সে জানতোও না য়ে তারা য়োষেফকে বিক্রী করে দিয়েছে| রূবেণ কূপের ধারে ফিরে এসে দেখল য়োষেফ সেখানে নেই| তখন সে দুঃখ প্রকাশ করার জন্য নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেলল| 30 ভাইয়েদের কাছে ফিরে গিয়ে রূবেণ বলল, “ছেলেটা সেখানে নেই, এখন আমি কি করব?” 31 ভাইয়েরা তখন একটা ছাগল মেরে তার রক্তে য়োষেফের সুন্দর শালটা রাঙ্গিয়ে দিল| 32 এরপর তারা সেই শালটা তাদের পিতাকে দেখাল| ভাইয়েরা বলল, “আমরা এই শালটা পেয়েছি, দেখুন তো এটা য়োষেফের কিনা?” 33 তাদের পিতা শালটা দেখে চিনতে পারলেন য়ে সেটা য়োষেফেরই| পিতা বললেন, “হ্যাঁ, এটা তো তারই! হয়তো কোনো বন্য জন্তু তাকে মেরে ফেলেছে| আমার পুত্র য়োষেফকে এক হিংস্র পশু খেয়ে ফেলেছে!” 34 পুত্র শোকে যাকোব তার কাপড় ছিঁড়ে ফেলল, তারপর চট বস্ত্র পরে দীর্ঘ সময় তার পুত্রের জন্য শোক করল| 35 যাকোবের পুত্র কন্যারা তাকে সান্ত্বনা দিতে চাইল| কিন্তু যাকোবকে সান্ত্বনা দেওয়া গেল না| সে বলল, “আমার মৃত্যু দিন পর্য্ন্ত আমি আমার পুত্রের জন্য দুঃখ করে যাব|”তাই যাকোব য়োষেফের জন্য দুঃখিত হয়ে রইল| 36 মিদিয়নীয় বণিকরা পরে য়োষেফকে মিশরে নিয়ে গিয়ে ফরৌণের রক্ষক সেনাপতি পোটীফরের কাছে বিক্রি করে দিল|
1 সেই সময় যিহূদা তার ভাইদের ছেড়ে হীরা নামে একটি লোকের সঙ্গে বাস করতে গেল| হীরা ছিলেন অদুল্লমীয় শহরের লোক| 2 সেখানে যিহূদা এক কনানীয় স্ত্রীলোককে দেখতে পেয়ে তাকে বিয়ে করল| মেয়েটির পিতার নাম ছিল শূয়| 3 কনানীয় মেয়েটি একটি পুত্রের জন্ম দিয়ে তার নাম রাখল এর| 4 পরে সে আরেকটি পুত্রের জন্ম দিয়ে তার নাম রাখল ওনন| 5 পরে তার শেলা নামে আরেকটি পুত্র হল| তৃতীয় পুত্রের জন্মের সময় যিহূদা কষীবে বাস করছিল| 6 যিহূদা তামর নামে এক কন্যাকে এনে তার সঙ্গে প্রথম পুত্র এরের বিয়ে দিল| 7 কিন্তু এর অনেক মন্দ কাজ করায প্রভু তার প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাকে হত্যা করলেন| 8 তখন যিহূদা এরের ভাই ওননকে বলল, “যাও তোমার মৃত ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে শয়ন কর| তার স্বামী হও| নিজের ভাই এরের জন্য বংশ উত্পন্ন কর|” 9 ওনন বুঝল মিলনের ফলে সন্তানসন্ততি হলে তা তার হবে না| ওনন তাই য়ৌন সঙ্গম করল| সে তার শরীরের অভ্য়ন্তরে বীর্য়্য় ত্যাগ করল না| 10 এই কাজে প্রভু ক্রুদ্ধ হলেন এবং ওননকেও মেরে ফেললেন| 11 তখন যিহূদা তার বৌমা তামরকে বলল, “যাও, তোমার পিতার বাড়ী ফিরে যাও| য়ে পর্য্ন্ত না আমার ছোট পুত্র শেলা বড় হয় সে পর্য্ন্ত বিয়ে না করে সেখানেই থাক|” যিহূদা আসলে ভয় পেয়েছিলেন, ভেবেছিলেন অন্য ভাইদের মতো হয়তো শেলাও মারা যাবে| তামর তার পিতার বাড়ী ফিরে গেল| 12 পরে যিহূদার স্ত্রী, শূয়ের কন্যার মৃত্যু হল| শোকের সময় গেলে যিহূদা তার অদুল্লমীয় বন্ধু হীরার সাথে মেষদের লোম ছাঁটতে তিম্নায গেল| 13 তামর জানতে পারল য়ে তার শ্বশুর তিম্নায় তার মেষদের লোম ছাঁটতে যাচ্ছেন| 14 তামর বিধবা বলে য়ে কাপড় পরত তা খুলে ফেলে অন্য কাপড় পরল ও তার মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকল| তারপর সে তিম্নার কাছে অবস্থিত ঐনযিম শহরের দিকে য়ে রাস্তা চলে গেছে তার ধারে বসল| তামর জানত য়ে যিহূদার ছোট পুত্র শেলা এখন বড় হয়েছে কিন্তু তবু শেলার সাথে তার বিয়ে দেবার কোন পরিকল্পনাই যিহূদা করে নি| 15 যিহূদা সেই পথে য়েতে য়েতে তাকে দেখে ভাবল বোধ হয় বেশ্যা| (বেশ্যার মত তার মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকা ছিল|) 16 যিহূদা তার কাছে গিয়ে বলল, “এস আমার সাথে শোও|” (যিহূদা জানত না য়ে এই ছিল তামর, তার পুত্রবধূ|)সে বলল, “আমায় কত দেবেন?” 17 যিহূদা উত্তর করল, “আমার পশুপাল থেকে তোমার জন্য একটা বাচ্চা ছাগল পাঠিয়ে দেব|”সে বলল, “ঠিক আছে| কিন্তু ছাগলটা পৌঁছাবার আগে আমার কাছে কিছু বন্ধক রাখুন|” 18 যিহূদা জিজ্ঞেস করল, “তোমাকে য়ে ছাগল পাঠাব তার প্রমাণ হিসাবে তুমি আমার কাছে কি চাও?”তামর বলল, “চিঠিতে মারবার তোমার ঐ মোহর, ও তার সুতো এবং হাঁটার ছড়িটাও আমায় দাও|” যিহূদা তাকে ঐ জিনিসগুলো দিল| তারপর যিহূদা ও তামর সহবাস করলে তামর গর্ভবতী হল| 19 তামর ঘরে ফিরে মুখের ওড়নাটা খুলে ফেলে বিধবার সাজে সাজল| 20 পরে যিহূদা তার বন্ধু হীরাকে এনযিমে পাঠাল সেই বেশ্যাকে ছাগলটা দিতে| যিহূদা হীরাকে আরও বলল য়ন সে তার কাছে থেকে সেই মোহর ও ছড়িটা নিয়ে আসে| কিন্তু হীরা তাকে খুঁজে পেল না| 21 হীরা ঐনযিম শহরের লোকদের জিজ্ঞাসা করল, “রাস্তার ধারে বসে থাকা বেশ্যাটা কোথায়?”লোকে উত্তর দিল, “এখানে কখনই কোন বেশ্যা ছিল না তো|” 22 তাই যিহূদার বন্ধু ফিরে এসে বলল, “সেই স্ত্রীলোককে খুঁজে পেলাম না| সেখানকার লোকজন বলল সেখানে কোন বেশ্যা কখনই ছিল না|” 23 তাই যিহূদা বলল, “সেইসব জিনিস তার কাছেই থাকুক| আমি চাই না য়ে লোক আমাদের নিয়ে হাসে| আমি ছাগলটা তাকে দিতে চেযেছিলাম কিন্তু খুঁজে পেলাম না| এটাই যথেষ্ট|” 24 তিন মাস পরে কেউ একজন যিহূদাকে বলল, “তোমার পুত্রবধু তামর বেশ্যার কাজ করেছে আর এখন সে গর্ভবতী হয়েছে|”তখন যিহূদা বলল, “তাকে বাইরে নিয়ে এসে পুড়িয়ে দাও|” 25 সেই লোকটি তামরকে হত্যা করতে এলে সে তার শ্বশুরকে এক খবর পাঠাল| তামর বলল, “য়ে লোকটি আমায় গর্ভবতী করেছে এই জিনিসগুলি তার| এই জিনিসগুলির দিকে দেখ| এগুলো কার? এই মোহর ও সুতো কার? এই ছড়িটা কার?” 26 যিহূদা সেই জিনিসগুলো চিনতে পেরে বলল, “সেই ঠিক| আমারই ভুল হয়েছে| আমি আমার পুত্র শেলাকে দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেও তাকে দিই নি|” এরপর যিহূদা কিন্তু তার সাথে আর সহবাস করল না| 27 তামরের প্রসবের সময় উপস্থিত হলে তারা দেখল তার যমজ সন্তান হতে চলেছে| 28 প্রসবের সময় একটা বাচ্চা তার হাত বের করলে ধাইমা তার হাতে একটা লাল সুতো বাঁধল আর বলল, “এই বাচ্চাটা আগে জন্মাবে|” 29 কিন্তু বাচ্চাটা তার হাত গুটিযে নিলে অন্য বাচ্চাটা প্রথমে জন্মাল| তাই সেই ধাইমা বলল, “তুমি প্রথমে ঠেলে বেরিয়ে আসতে পেরেছ!” তাই তারা তার নাম পেরস রাখল| 30 এরপর অন্য শিশুটির জন্ম হল, যার হাতে লাল সুতো বাধা ছিল| তারা এর নাম রাখল সেরহ|
1 বণিকরা যারা য়োষেফকে কিনেছিল, তারা তাকে মিশরে নিয়ে গেল এবং ফরৌণের রক্ষকদের সেনাপতি পোটীফরের কাছে বিক্রি করে দিল| 2 কিন্তু প্রভু য়োষেফকে সাহায্য করলেন| য়োষেফ সফলকর্মা হলেন| য়োষেফ সেই মিশরীয় পোটীফরের অর্থাত্ তার মনিবের বাড়ীতেই বাস করতেন| 3 পোটীফর দেখলেন য়ে প্রভু য়োষেফের সাথে রয়েছেন এবং য়োষেফ যা কিছু করেন তাতেই তিনি তাকে সফল হতে দেন| 4 সেইজন্য পোটীফর খুশী হয়ে য়োষেফকে তার নিজের বাড়ীর অধ্যক্ষ করে তারই হাতে সব কিছুর ভার দিলেন| 5 য়োষেফকে সেই বাড়ীর অধ্যক্ষ করা হলে প্রভু পোটীফরের বাড়ী এবং তার সব কিছুকে আশীর্বাদ করলেন| য়োষেফের জন্যই প্রভু একাজ করলেন| আর তিনি পোটীফরের ক্ষেতে যা জন্মাত তাকেও আশীর্বাদযুক্ত করলেন| 6 তাই পোটীফর তার বাড়ীর সব কিছুর ভারই য়োষেফের হাতে দিয়ে দিলেন, কেবল নিজের খাবারটা ছাড়া আর কিছুরই জন্য তিনি চিন্তিত ছিলেন না|য়োষেফ ছিলেন অত্যন্ত রূপবান ও সুদর্শন পুরুষ| 7 কিছু সময় পরে য়োষেফের মনিবের স্ত্রীও তাকে পছন্দ করতে শুরু করল| একদিন সে তাকে বলল, “আমার সঙ্গে শোও|” 8 কিন্তু য়োষেফ প্রত্যাখ্যান করে বলল, “আমার মনিব জানেন তার বাড়ীর প্রতিটি বিষযের প্রতি আমি বিশ্বস্ত| তিনি এখানকার সব কিছুর দায দায়িত্বই আমাকে দিয়েছেন| 9 আমার মনিব আমাকে এই বাড়ীতে প্রায় তার সমান স্থানেই রেখেছেন| আমি কখনই তার স্ত্রীর সঙ্গে শুতে পারি না| এটা মারাত্মক ভুল কাজ! ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ|” 10 স্ত্রী লোকটি রোজই য়োষেফকে এ কথা বলত, কিন্তু য়োষেফ রাজী হতেন না| 11 একদিন য়োষেফ নিজের কাজ করতে বাড়ীর ভেতরে গেলেন| সেই সময় সেই বাড়ীতে কেবল একা তিনিই ছিলেন| 12 তার মনিবের স্ত্রী সেই সময় তার কাপড় টেনে ধরে বলল, “আমার সঙ্গে বিছানায় এস|” কিন্তু য়োষেফ সেই বাড়ী থেকে এত দ্রুত দৌড়ে পালাল য়ে জামাটা স্ত্রীলোকটির হাতেই রয়ে গেল| 13 স্ত্রীলোকটি দেখল য়ে য়োষেফ তার হাতেই জামাটা ফেলে বাড়ীর বাইরে দৌড়ে বেরিয়ে গেছে| তাই সে চিন্তা করে ঠিক করল যা ঘটেছে সে সম্বন্ধে মিথ্যা কথা বলবে| 14 সে তার বাড়ীর ভৃত্যদের ডেকে বলল, “দেখ! এই ইব্রীয় ক্রীতদাসকে কি আমাদের নিয়ে ঠাট্টা করার জন্য এখানে আনা হয়েছে? সে ভিতরে এসে আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমি চেঁচিয়ে উঠলাম| 15 আমার চিত্কারে সে ভয় পেয়ে পালাল| কিন্তু সে তার জামাটা ফেলে গেছে|” 16 তারপর তার স্বামী অর্থাত্ য়োষেফের মনিব আসা পর্য্ন্ত সে সেই জামাটা তার কাছে রেখে দিল| 17 স্বামীকেও সে ঐ একই ঘটনা বলল| সে বলল, “য়ে ইব্রীয় দাসটিকে তুমি এখানে এনেছ, সে আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল| 18 কিন্তু সে আমার কাছে আসতেই আমি চিত্কার করে উঠলাম| সে দৌড়ে পালাল বটে কিন্তু তার জামাটা ফেলে গেল|” 19 য়োষেফের মনিব তার স্ত্রীর সব কথা শুনে ক্রুদ্ধ হল| 20 তাই রাজার শত্রুদের য়ে কারাগারে রাখা হত, পোটীফর য়োষেফকে সেইখানে রাখল| য়োষেফ সেখানে রইলেন| 21 কিন্তু প্রভু য়োষেফের সঙ্গে ছিলেন| প্রভু য়োষেফের প্রতি দয়া করে চললেন| কিছুদিন পরে সেই কারাগারের রক্ষকদের প্রধানের কাছে তিনি প্রিয হলেন| 22 সেই কারাগারের সমস্ত বন্দীদের ভার য়োষেফের হাতে দিলেন| সেই পদে অধিষ্ঠিত য়ে কোন পদাধিকারী স্বাভাবিকভাবে যা করেন, য়োষেফ তাই করতেন| 23 সুতরাং য়োষেফের অধীনের কোন কাজই কারাধিকারীকে তত্ত্বাবধান করতে হোত না| এটা হয়েছিল কারণ প্রভু তার সঙ্গে ছিলেন এবং তাকে সব কাজে সফল করেছিলেন|
1 পরে ফরৌণের দুই ভৃত্য ফরৌণের প্রতি কিছু অন্যায় কাজ করল| এই ভৃত্যেরা ছিল তার রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারী| 2 ফরৌণ প্রধান রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারীর উপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| 3 তাই ফরৌণ তাদের য়োষেফের সাথে একই কারাগারে রাখলেন| পোটীফর, ফরৌণের কারারক্ষকদের প্রধান সেই কারাগারের দায়িত্বে ছিলেন| 4 প্রধান কারারক্ষক সেই দুই বন্দীকে য়োষেফের পরিচর্য়ার অধীনে রাখলেন| সেই দুইজন লোকই কিছু সময় সেই কারাগারে রইল| 5 একদিন রাত্রে দুই বন্দীই স্বপ্ন দেখল| (এই দুই বন্দী ছিল মিশরের রাজার রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারী|) প্রত্যেক বন্দীই ভিন্ন ভিন্ন স্বপ্ন দেখল এবং প্রতিটি স্বপ্নের নিজস্ব অর্থ ছিল| 6 পরের দিন সকালে য়োষেফ তাদের কাছে গিয়ে দেখলেন য়ে তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ| 7 য়োষেফ জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের এত বিষন্ন দেখাচ্ছে কেন?” 8 লোক দুটি উত্তর করল, “গত রাতে আমরা স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু স্বপ্নের অর্থ বুঝছি না| সেই স্বপ্নের অর্থ বলার বা তা বুঝিযে দেবার কেউ নেই|”য়োষেফ তাদের বললেন, “ঈশ্বরই একজন যিনি বোঝেন ও স্বপ্নের অর্থ বলতে পারেন| তাই আমার অনুরোধ, তোমাদের স্বপ্নগুলো বল|” 9 সুতরাং দ্রাক্ষারস পরিবেশক য়োষেফকে তার স্বপ্ন বলল, “আমি স্বপ্নে একটা দ্রাক্ষালতা দেখলাম| 10 সেই লতায় তিনটে শাখা ছিল| আমি দেখলাম শাখাগুলিতে ফুল হল এবং দ্রাক্ষা ফলল| 11 আমি ফরৌণের পানপাত্র ধরেছিলাম, তাই সেই দ্রাক্ষাগুলোকে সেই কাপে নিঙড়ে নিলাম| তারপর সেই পানপাত্র ফরৌণকে দিলাম|” 12 তখন য়োষেফ বললেন, “সেই স্বপ্নের অর্থ আমি তোমায় বলছি| তিনটি শাখার অর্থ তিন দিন| 13 তিন দিন শেষ হবার আগেই ফরৌণ তোমায় ক্ষমা করে আবার তোমাক কাজে বহাল করবেন| তুমি ফরৌণের জন্য আগে য়ে কাজ করতে তাই-ই করবে| 14 কিন্তু তুমি ছাড়া পেলে আমায় স্মরণ কর| আমার প্রতি দয়া কর| ফরৌণকে আমার সম্বন্ধে বল যাতে আমি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে পারি| 15 আমাকে জোর করে আমার নিজের জায়গা, ইব্রীয়দের দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে| কারাগারে থাকার মত কোন অন্যায়ই আমি করি নি|” 16 রুটিওয়ালা দেখল অন্য ভৃত্যের স্বপ্নটা ভাল| তখন সে য়োষেফকে বলল, “আমিও একটা স্বপ্ন দেখেছি| দেখলাম আমার মাথায় রুটির তিনটে ঝুড়ি রয়েছে| 17 উপরের ঝুড়িতে সব রকমের সেঁকা খাবার ছিল| সেই খাবার রাজার জন্য ছিল কিন্তু পাখীরা ঐ খাবার খেতে লাগল|” 18 য়োষেফ বললেন, “আমি তোমাকে স্বপ্নের অর্থ বলছি| তিনটে ঝুড়ির অর্থ তিন দিন| 19 তিন দিনের মধ্যে রাজা তোমাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেবেন| তিনি তোমার শিরশ্ছেদ করে একটা বাঁশের মাথায় ঝুলিয়ে দেবেন| আর পাখীরা তোমার দেহের মাংস খাবে|” 20 তৃতীয় দিনটা ছিল ফরৌণের জন্ম দিন| ফরৌণ তাঁর সব দাসদের জন্য ভোজের আযোজন করলেন| সেই সময়ে ফরৌণ রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেন| 21 ফরৌণ পানপাত্র বাহককে মুক্তি দিয়ে পুনরায় তাকে তার কাজে নিয়েগ করলেন| আর সেই পানপাত্র বাহক আবার ফরৌণের হাতে পানপাত্র দিতে লাগল| 22 কিন্তু ফরৌণ রুটিওয়ালাকে ফাঁসি দিলেন| য়োষেফ য়েমনটি বলেছিলেন সেরকম ভাবেই সব ঘটনা ঘটল| 23 কিন্তু সেই পানপাত্র বাহকদের য়োষেফকে সাহায্য করার কথা মনে রইল না| সে য়োষেফের বিষয ফরৌণকে কিছুই বলল না, য়োষেফের কথা ভুলে গেল|
1 দু বছর পর ফরৌণ একটা স্বপ্ন দেখলেন| দেখলেন তিনি নীল নদীর ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন| 2 স্বপ্নে নদী থেকে সাতটা গরু উঠে এসে ঘাস খেতে লাগল| গরুগুলো ছিল হৃষ্টপুষ্ট, দেখতেও ভালো| 3 এরপর নদী থেকে আরও সাতটা গরু উঠে এসে পাড়ের হৃষ্টপুষ্ট গরুগুলোর গা ঘেঁসে দাঁড়াল| কিন্তু ঐ গরুগুলো রোগা ছিল, দেখতেও অসুস্থ| 4 সেই সাতটা অসুস্থ গরু সাতটা হৃষ্টপুষ্ট গরুগুলোকে খেয়ে ফেলল| তখনই ফরৌণের ঘুম ভেঙ্গে গেল| 5 ফরৌণ আবার শুতে গেলেন; আবার স্বপ্ন দেখলেন| এইবার দেখলেন একটা গাছে সাতটা শীষ বেড়ে উঠছে| শীষগুলো পুষ্ট এবং শস্যে ভরা| 6 তারপর দেখলেন আরও সাতটা শীষ উঠছে| কিন্তু শীষগুলো অপুষ্ট আর পূবের বাতাসে ঝলসে গেছে| 7 এরপর ঐ রোগা রোগা সাতটা শীষ পুষ্ট সাতটা শীষকে খেয়ে ফেলল| ফরৌণের ঘুম আবার ভেঙ্গে গেল| তিনি বুঝলেন য়ে তিনি স্বপ্ন দেখছিলেন| 8 পরের দিন সকালে রাতে দেখা স্বপ্নগুলোর জন্য ফরৌণের মন অস্থির হয়ে উঠল| তাই তিনি মিশরের সমস্ত যাদুকর ও জ্ঞানী লোকদের ডেকে পাঠালেন| ফরৌণ তার স্বপ্ন তাদের বললেন কিন্তু কেউ তার অর্থ বলতে পারল না| 9 তখন পানপাত্রবাহকের য়োষেফের কথা মনে পড়ল| ভৃত্যটি ফরৌণকে বলল, “আমার সাথে যা ঘটেছিল তা মনে পড়ছে| 10 আপনি আমার ও রুটিওয়ালার উপর রেগে গিয়েছিলেন এবং আমাদের বন্দী করেছিলেন| 11 তারপর এক রাতে সে ও আমি স্বপ্ন দেখলাম| প্রত্যেকটি স্বপ্নের আলাদা অর্থ ছিল| 12 আমাদের সাথে কারাগারে এক ইব্রীয় যুবক ছিল| সে ছিল রক্ষীদের অধিকারী ভৃত্য| আমরা তাকে আমাদের স্বপ্ন বললে সে তার মানে বলে দিল| 13 আর সে যা বলল বাস্তবে তাই-ই ঘটল| সে বলেছিল য়ে আমি মুক্তি পেয়ে আবার পুরানো কাজ ফিরে পাব - ঘটলও তাই| রুটিওয়ালা সম্বন্ধে বলেছিল য়ে সে মারা যাবে - ঘটলও তাই|” 14 তাই ফরৌণ য়োষেফকে ডেকে পাঠালে দুজন রক্ষী দ্রুত তাকে কারাগার থেকে বের করে আনল| য়োষেফ দাড়ি কামালেন, পরিষ্কার জামা পরলেন| তারপর ফরৌণের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| 15 ফরৌণ য়োষেফকে বললেন, “আমি একটা স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু কেউ তার ব্যাখ্যা করতে পারছে না| আমি শুনেছি য়ে তুমি স্বপ্ন শুনলে তার ব্যাখ্যা করতে পার|” 16 উত্তরে য়োষেফ বললেন, “আমি পারি না! কিন্তু হয়তো ফরৌণের জন্য ঈশ্বর তার অর্থ বলে দেবেন|” 17 তখন ফরৌণ য়োষেফকে বলতে লাগলেন, “আমার দেখা স্বপ্নে আমি নীল নদীর ধারে দাঁড়িয়েছিলাম| 18 তখন নদী থেকে সাতটা গরু উঠে এসে ঘাস খেতে শুরু করল| গরুগুলো ছিল হৃষ্টপুষ্ট, দেখতেও সুন্দর| 19 তারপর আমি নদী থেকে আরও সাতটি গরু উঠে আসতে দেখলাম| কিন্তু এই গরুগুলো রোগা রোগা, দেখতেও অসুস্থ| ঐরকম বিশ্রী গরু আমি মিশরে কখনও দেখি নি| 20 তারপর রোগা অসুস্থ গরুগুলো প্রথমে আসা হৃষ্টপুষ্ট গরুগুলোকে খেয়ে ফেলল| 21 কিন্তু তাও তাদের চেহারা রোগা আর অসুস্থই রইল| দেখে মনেই হবে না যা তারা সেই মোটা মোটা গরুগুলো খেয়েছে| তারপর আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল| 22 “আমার পরের স্বপ্নে আমি দেখলাম একটা গাছে সাতটা শীষ বেড়ে উঠছে| শীষগুলো পুষ্ট শস্যের দানায ভরা| 23 তারপর সেগুলোর পরে সাতটা আরও শীষ উঠে এলো| কিন্তু এগুলো রোগা আর পূবের বাতাসে ঝলসানো ছিল| 24 এরপর সেই অপুষ্ট শীষগুলো পুষ্ট শীষগুলোকে খেয়ে ফেলল|“আমার যাদুকরদের আমি এই স্বপ্নগুলো বললাম বটে কিন্তু তারা তার অর্থ বলতে পারল না| স্বপ্নগুলোর অর্থ কি?” 25 তখন য়োষেফ ফরৌণকে বললেন, “এই দুই স্বপ্নের বিষয়টা এক| ঈশ্বর শীঘ্রই যা করতে চলেছেন তা আপনার কাছে প্রকাশ করেছেন| 26 উভয় স্বপ্নের প্রকৃত অর্থ এক| সাতটা ভাল গরু এবং সাতটা ভাল শীষ সাতটা ভাল বছরকে বোঝাচ্ছে| 27 আর সাতটা রোগা গরু, সাতটা অপুষ্ট শীষ বোঝায় সাতটা দুর্ভিক্ষের বছর| সাতটা ভাল বছরের পর দুর্ভিক্ষের সাত বছর আসবে| 28 শীঘ্র যা ঘটতে চলেছে ঈশ্বর তাই-ই আপনাকে দেখিয়েছেন| য়ে ভাবে আমি বললাম ঈশ্বর সেইভাবেই এসব ঘটাবেন| 29 সাত বছর মিশরে প্রচুর শস্য উত্পন্ন হবে| 30 কিন্তু তারপর আসবে দুর্ভিক্ষের সাতটা বছর| মিশরের লোকরা ভুলে যাবে অতীতে কত শস্যই না হত| এই দুর্ভিক্ষে দেশ নষ্ট হবে| 31 লোকরা ভুলে যাবে শস্যের প্রাচুর্য়্য় বলতে কি বোঝায| 32 “ফরৌণ, আপনি একটি বিষয় নিয়ে দুটি স্বপ্ন দেখেছন| কারণ ঈশ্বর য়ে সত্যিই তা ঘটাতে চলেছেন তা আপনাকে দেখাতে চাইলেন| আর তিনি শীঘ্রই তা ঘটাবেন| 33 তাই ফরৌণ, আপনার উচিত্ একজন সুবুদ্ধি ও জ্ঞানবান লোক খুঁজে তাকে মিশর দেশের জন্য নিযুক্ত করা| 34 তারপর আপনি অন্য লোকদের নিয়োগ করুন য়েন তারা খাদ্য সংগ্রহ করে| সাতটি ভাল বছরের প্রত্যেকটি লোক তাদের উত্ পন্ন শস্যের এক পঞ্চমাংশ সেই লোকদের দিক| 35 এইভাবে ঐ লোকরা ঐ সাতটি ভাল বছরে প্রচুর খাদ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজন না পড়া পর্য্ন্ত শহরে শহরে সংগ্রহ করে রাখবে| এইভাবে ফরৌণ, আপনার অধীনে ঐ খাদ্য আসবে| 36 তারপর দুর্ভিক্ষের সাত বছরে মিশর দেশের জন্য খাদ্য থাকবে| আর দুর্ভিক্ষে মিশর ধ্বংস হয়ে যাবে না|” 37 এই পরিকল্পনা ফরৌণের মনপুতঃ হল আর তাঁর আধিকারিকরাও মেনে নিল| 38 তারপর ফরৌণ তাদের বললেন, “ঐ কাজ করার জন্যে মনে হয় না আমরা য়োষেফের থেকে আর ভাল কাউকে পাব! ঈশ্বরের আত্মা তার সঙ্গে রয়েছে আর সেই জন্যই সে জ্ঞানবান!” 39 তাই ফরৌণ য়োষেফকে বললেন, “ঈশ্বর তোমাকে এই সমস্ত যখন জানিয়েছেন তখন তোমার মত জ্ঞানী আর কে হতে পারে? 40 আমি তোমাকে আমার নিয়ন্ত্রণের জন্য নিযুক্ত করলাম, সমস্ত লোক তোমার আদেশ পালন করবে| ক্ষমতার দিক থেকে কেবল আমি তোমার চেযে বড় থাকব|” 41 ফরৌণ য়োষেফকে বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ্যপাল করলেন| ফরৌণ য়োষেফকে বললেন, “আমি তোমাকে সমগ্র মিশরের রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করলাম|” 42 তারপর ফরৌণ তাঁর আংটি খুলে য়োষেফের হাতে পরিযে দিলেন| সেই আংটিতে রাজকীয ছাপ ছিল| ফরৌণ তাকে মিহি কার্পাসের পোশাক দিলেন এবং তার গলায সোনার হার পরিযে দিলেন| 43 ফরৌণ য়োষেফকে দ্বিতীয় রথে চড়তে দিলেন| রক্ষকরা য়োষেফের রথের আগে আগে য়েতে য়েতে লোকদের বলতে থাকল, “য়োষেফের সামনে হাঁটু গাড়ো|”এইভাবে য়োষেফ সমগ্র মিশরের রাজ্যপাল হলেন| 44 ফরৌণ তাকে বললেন, “আমি রাজা ফরৌণ, সুতরাং আমি যা চাই তাই করব কিন্তু মিশরের আর কেউ তোমার আজ্ঞা ছাড়া হাত অথবা পা তুলতে পারবে না|” 45 ফরৌণ য়োষেফের আর এক নাম সাফনত্-পানেহ রাখলেন| ফরৌণ য়োষেফকে আসনত্ নামে এক কন্যার সঙ্গে বিয়েও দিলেন| সে ছিল ওন নামক শহরে যাজক পোটীফরের কন্যা| এইভাবে য়োষেফ সমস্ত মিশর দেশের রাজ্যপাল হলেন| 46 য়োষেফের 30বছর বয়সে তিনি মিশর দেশের রাজার সেবা করতে শুরু করলেন| তিনি সমস্ত মিশর দেশ ঘুরলেন| 47 সাত বছর মিশরে খুব ভাল শস্য উত্পন্ন হল| 48 আর ঐ সাত বছর ধরে য়োষেফ মিশরে খাবার সঞ্চয় করলেন| প্রত্যেক শহরে শহরে য়োষেফ সেই শহরের আশেপাশের ক্ষেতে যা জন্মাত তার থেকে সংগ্রহ করতেন| 49 য়োষেফ সমুদ্রের বালির মত এত শস্য সংগ্রহ করলেন য়ে তা মাপা গেল না কারণ তা মাপা সম্ভব ছিল না| 50 য়োষেফের স্ত্রী আসমত্ ছিলেন ওন শহরের যাজকের কন্যা| দুর্ভিক্ষের প্রথম বছর আসার আগেই য়োষেফ এবং আসমতের দুটি পুত্র হল| 51 প্রথম পুত্রের নাম রাখা হল মনঃশি| য়োষেফ এই নাম দিলেন কারণ তিনি বললেন, “ঈশ্বর আমার সমস্ত কষ্ট ও আমার বাড়ীর সমস্ত চিন্তা ভুলে য়েতে দিলেন|” 52 য়োষেফ দ্বিতীয় পুত্রের নাম রাখলেন ইফ্রয়িম| য়োষেফ এই নাম রাখলেন কারণ তিনি বললেন, “আমার মহাকষ্টের মধ্যেও ঈশ্বর আমাকে ফলবান করেছেন|” 53 সাত বছর লোকেরা খাদ্যের জন্য প্রচুর শস্য পেল| তারপর সেই বছরগুলো শেষ হল| 54 এবার দুর্ভিক্ষের সাতটা বছর শুরু হল ঠিক য়েমনটি য়োষেফ বলেছিলেন| সেই অঞ্চলের কোন দেশে কোথাও কোন খাদ্য শস্য জন্মালো না| কিন্তু মিশরের লোকদের জন্য য়থেষ্ট খাদ্য ছিল. কারণ য়োষেফ শস্য জমা করে রেখেছিলেন| 55 দুর্ভিক্ষের সময় শুরু হলে লোকেরা খাদ্যের জন্য ফরৌণের কাছে এসে কান্নাকাটি করল| ফরৌণ মিশরীযদের বললেন, “যাও য়োষেফকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর কি করতে হবে|” 56 সব জায়গায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে য়োষেফ গুদাম থেকে লোকদের শস্য বিক্রি করতে শুরু করলেন| দুর্ভিক্ষ মিশরেও ভযাবহ রূপ নিল| 57 সর্বত্রই সেই দুর্ভিক্ষ প্রবল হল, ফলে মিশরের আশেপাশের দেশ থেকেও লোকরা শস্য কিনতে এলো|
1 কনান দেশেও প্রবলভাবে দুর্ভিক্ষ হলো| যাকোব জানতে পারল য়ে মিশর দেশে শস্য রয়েছে| তাই যাকোব তার পুত্রদের বলল, “আমরা কিছু না করে কেন এখানে বসে রযেছি? 2 শুনলাম মিশর দেশে শস্য বিক্রি হচ্ছে| সেখানে গিয়ে আমরা শস্য কিনি| তাহলে আমরা বাঁচব| মরব না!” 3 তাই য়োষেফের দশ ভাই মিশরে শস্য কিনতে গেলেন| 4 যাকোব কিন্তু বিন্যামীনকে পাঠালেন না| (কেবল বিন্যামীনই য়োষেফের সহোদর ভাই ছিলেন|) যাকোব ভয় পেলেন পাছে বিন্যামীনের খারাপ কিছু ঘটে| 5 কনানেও দুর্ভিক্ষ ভযাবহ রূপ নিল ফলে কনান দেশের বহু লোক মিশরে শস্য কিনতে গেল| তাদের মধ্যে ইস্রাযেলের সন্তানরাও ছিলেন| 6 সেই সময় য়োষেফ মিশর দেশের রাজ্যপাল ছিলেন| আর য়ে সব লোক মিশরে শস্য কিনতে আসত তাদের উপর য়োষেফ নজর রাখতেন| তাই য়োষেফের ভাইরাও তার কাছে এসে হেঁট হয়ে প্রণাম করল| 7 য়োষেফ তাঁর ভাইদের দেখে চিনতে পারলেন, কিন্তু এমন ভান করলেন য়েন তাদের চেনেনই না| তিনি তাদের সঙ্গে কর্কশভাবে কথা বললেন| তিনি বললেন, “তোমরা কোথা থেকে এসেছ?”ভাইরা উত্তর দিল, “আমরা কনান দেশ থেকে এখানে খাদ্য কিনতে এসেছি|” 8 য়োষেফ জানতেন য়ে এই লোকরাই তার ভাই কিন্তু তারা য়োষেফকে চিনল না| 9 আর ভাইদের নিয়ে য়োষেফ য়ে স্বপ্নগুলি দেখেছিলেন তা তাঁর মনে পড়ে গেল|য়োষেফ তাঁর ভাইদের বললেন, “তোমরা এখানে শস্য কিনতে আস নি! তোমরা গুপ্তচর| তোমরা আমাদের দুর্বল জায়গাগুলো জানতে এসেছ|” 10 কিন্তু তার ভাইরা বলল, “তা নয় মহাশয়! আমরা আপনার দাস, কেবল খাদ্য কিনতে এসেছি|” 11 আমরা ভাইরা এক পিতার সন্তান| আমরা সত্ লোক, আমরা কেবল খাদ্য কিনতে এসেছি|” 12 তখন য়োষেফ তাদের বললেন, “তা নয়, কিন্তু তোমরা আমাদের কোথায় দুর্বলতা তাই দেখতে এসেছ|” 13 আর ভাইরা বলল, “না! আমরা সবাই ভাই ভাই! আমাদের পরিবারে আমরা বারো ভাই| আমাদের সকলের পিতা একজনই| ছোট ভাই এখনও আমাদের পিতার কাছে রয়েছে| অন্য ভাইটি বহু বছর আগে মারা গেছে| আমরা আপনার দাস, কনান দেশ থেকে এসেছি|” 14 কিন্তু য়োষেফ তাদের বলল, “না! আমি দেখছি আমার কথাই ঠিক| তোমরা গুপ্তচরই বটে|” 15 কিন্তু তোমরা য়ে সত্য বলছ তা আমি তোমাদের প্রমাণ করতে দেব| ফরৌণের নামে দিব্য়ি দিয়ে বলছি, য়ে পর্য্ন্ত না তোমাদের ছোট ভাই এখানে আসে আমি তোমাদের য়েতে দেব না| 16 আমি তোমাদের একজনকে য়েতে দেব য়ে ছোট ভাইকে আমার কাছে নিয়ে আসবে, সেই সময়ে তোমরা কারাগারে থাকবে| আমরা দেখব য়ে তোমাদের কথা সত্যি কিনা, যদিও আমার বিশ্বাস য়ে তোমরা গুপ্তচর|” 17 তারপর য়োষেফ তাদের তিনদিনের জন্য কারাগারে রাখলেন| 18 তিন দিন পরে য়োষেফ তাদের বললেন, “আমি ঈশ্বরকে ভয় করি! এই কাজ করলে তোমরা বাঁচবে| 19 তোমরা যদি সত্যিই সত্ লোক হও তবে তোমাদের এক ভাই এখানে এই কারাগারে থাকুক| অন্যরা শস্য বহন করে আপনজনের কাছে নিয়ে য়েতে পারে| 20 কিন্তু তোমরা অবশ্যই ছোট ভাইকে এখানে আমার কাছে নিয়ে আসবে| তাহলে আমি জানব য়ে তোমরা সত্য বলছ এবং তোমরা প্রাণে বাঁচবে|”ভাইরা এতে সম্মতি জানাল| 21 তারা একে অপরকে বলল, “আমরা য়োষেফের প্রতি য়ে অন্যায় কাজ করেছিলাম তার জন্য এই শাস্তি পাচ্ছি| আমরা তার কষ্ট দেখেও তার প্রাণের জন্য বিনতি শুনতে অস্বীকার করেছিলাম, আর এখন তাই আমরা এই সমস্যায় পড়েছি|” 22 তখন রূবেণ তাদের বলল, “আমি তোমাদের বলেছিলাম ঐ ছেলেটার প্রতি কোন অন্যায় কোর না| কিন্তু তোমরা আমার কথা শুনতে চাও নি| তাই এখন তার মৃত্যুর জন্য আমরা শাস্তি পাচ্ছি|” 23 য়োষেফ ভাইদের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনুবাদক ব্যবহার করছিলেন| তাই ভাইরা বুঝল না য়ে য়োষেফ তাদের ভাষা বুঝতে পারছেন| কিন্তু য়োষেফ যা শুনছিলেন তার সব কিছুই বুঝলেন| তাদের কথাবার্তা য়োষেফকে দুঃখিত করল| 24 তাই য়োষেফ তাদের থেকে দূরে গিয়ে কাঁদলেন| কিছুক্ষণ পরে য়োষেফ আবার তাদের কাছে ফিরে এলেন| তিনি শিমিয়োনকে ধরে তাদের সামনেই বাঁধলেন| 25 য়োষেফ তার ভৃত্যদের বললেন য়েন তাদের বস্তাগুলো শস্যে ভরে দেয| ভাইয়েরা শস্যের জন্য য়োষেফকে টাকা দিল| কিন্তু য়োষেফ সে টাকা না নিয়ে তাদের বস্তাতেই ফেরত রাখলেন| তারপর তিনি তাদের পথ যাত্রার জন্য রয়োজনীয় জিনিসগুলিও দিলেন| 26 তাই ভাইরা গাধার পিঠে শস্য চাপিয়ে রওনা হল| 27 সেই রাত্রে ভাইরা রাত কাটানোর জন্য এক জায়গায় এসে থামল| এক ভাই গাধার খাবার শস্য বের করার জন্য বস্তা খুলতেই বস্তায় তার টাকা দেখতে পেল| 28 সে অন্য ভাইদের বলল, “দেখ, শস্য কিনতে য়ে টাকা দিয়েছিলাম তা ফেরত এসেছে|” কেউ বস্তায় টাকা ফেরত রেখেছে| এতে ভাইরা খুব ভয় পেয়ে গেল| তারা একে অন্যকে বলল, “ঈশ্বর আমাদের প্রতি এ কি করেছেন?” 29 ভাইরা তাদের কনান দেশে পিতা যাকোবের কাছে ফিরে গেল| যা ঘটেছে তার সব কিছু তারা যাকোবকে বলল| 30 তারা বলল, “সেই দেশের রাজ্যপাল আমাদের সঙ্গে কর্কশভাবে কথা বললেন| তিনি ভাবলেন আমরা গুপ্তচর! 31 কিন্তু আমরা তাকে বললাম য়ে আমরা গুপ্তচর নই, আমরা সত্ লোক| 32 আমরা তাকে আমাদের পিতার কথা এবং ছোট ভাই কনান দেশে পিতার সঙ্গে বাড়ীতে রয়েছে তার কথা এবং এক ভাই য়ে মারা গেছে তার কথাও বললাম| 33 “তখন সেই দেশের রাজ্যপাল আমাদের এই কথা বললেন, “তোমরা য়ে সত্ লোক তার প্রমাণ দেবার একটা পথ রয়েছে| আমার এখানে তোমাদের এক ভাইকে রেখে যাও| তোমাদের শস্য তোমাদের পরিবারের কাছে নিয়ে যাও| 34 তারপর তোমাদের ছোট ভাইকে আমার কাছে নিয়ে এসো| তাহলে আমি বুঝব তোমরা সত্ লোক, অথবা তোমরা গুপ্তচর হয়ে আমাদের ধ্বংস করতে এসেছ কিনা| তোমরা যদি সত্যি বলছ প্রমাণ হয় তবে আমি তোমাদের ভাইকে ফেরত দেব আর তোমরা আবার স্বচ্ছন্দে এই দেশ থেকে শস্য কিনতে পারবে|” 35 তারপর ভাইরা তাদের বস্তা থেকে শস্য বের করতে শুরু করলো| আর প্রত্যেক ভাই নিজের নিজের বস্তায় নিজের নিজের টাকা খুঁজে পেলেন| ভাইরা ও তাদের পিতা সেই টাকা দেখে ভীত হল| 36 যাকোব তাদের বললেন, “তোমরা কি চাও আমি আমার সব সন্তানদের হারাই? য়োষেফ চলে গেছে| শিমিয়োনও নেই| আর এখন তোমরা বিন্যামীনকেও নিয়ে য়েতে এসেছ|” 37 কিন্তু রূবেন তার পিতাকে বলল, “পিতা, যদি আমি বিন্যামীনকে তোমার কাছে ফিরিযে না আনি তবে তুমি আমার দুই সন্তানকে হত্যা কোর|” 38 কিন্তু যাকোব বললেন, “আমি বিন্যামীনকে তোমাদের সঙ্গে য়েতে দেব না| তাই ভাই মৃত আর আমার স্ত্রী রাহেলের পুত্রদের মধ্যে সেই অবশিষ্ট| মিশরে যাবার পথে তার যদি কিছু হয় তবে তা আমাকে মেরেই ফেলবে| তাহলে এই দুঃখে তোমরা আমাকে এই বৃদ্ধ মানুষকে মেরে ফেলবে|”
1 দুর্ভিক্ষের সময়টা সেই দেশের পক্ষে খারাপ হল| 2 মিশর থেকে আনা সব শস্যই লোকেরা খেয়ে শেষ করে ফেলল| যখন সেইসব শস্য শেষ হল, যাকোব তার দুটি পুত্রকে বলল, “মিশরে গিয়ে খাবার জন্য আরও শস্য কিনে আনো|” 3 কিন্তু যিহূদা যাকোবকে বলল, “কিন্তু সেই দেশের রাজ্যপাল আমাদের সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইকে নিয়ে না এলে আমি তোমাদের সঙ্গে কথা বলব না|’ 4 আপনি বিন্যামীনকে আমাদের সঙ্গে পাঠালে আমরা আবার শস্য কিনতে য়েতে পারি| 5 কিন্তু বিন্যামীনকে না পাঠালে আমরা যাব না| সেই রাজ্যপাল আমাদের সাবধান করে দিয়ে বলেছে তাকে না নিয়ে আসা চলবে না|” 6 ইস্রায়েল বললেন, “কেন তোমরা তাকে বললে য়ে তোমাদের আরেক ভাই রয়েছে? কেন তোমরা আমায় এই রকম বিপদ এনে দিলে|” 7 ভাইরা উত্তরে বলল, “লোকটি অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিলেন| তিনি আমাদের ও আমাদের পরিবার সম্বন্ধে সব কিছু জানতে চাইছিলেন| তিনি এও জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের পিতা কি এখনও জীবিত আছেন? তোমাদের বাড়ীতে কি আর কোন ভাই রয়েছে?’ আমরা কেবল তার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি| আমরা জানতাম না য়ে তিনি ছোট ভাইকে নিয়ে আসতে বলবেন|” 8 তখন যিহূদা তার পিতা ইস্রায়েলকে বলল, “বিন্যামীনকে আমার সঙ্গে য়েতে দিন| আমি তার যত্ন নেব| আমাদের মিশরে য়েতেই হবে, না গেলে আমরা সবাই মারা যাব, এমনকি আমাদের সন্তানরাও মরবে| 9 আমি নিশ্চিতভাবে তার নিরাপত্তার দিকে নজর রাখব| আমিই তার দায়িত্ব নেব| আমি যদি তাকে ফেরত না আমি তবে চিরকাল তোমার কাছে অপরাধী থাকব| 10 আমাদের যদি আগে য়েতে দিতে তবে আমরা দ্বিতীয়বার খাবার নিয়ে আসতে পারতাম|” 11 তখন তাদের পিতা ইস্রায়েল বললেন, “এই যদি সত্যি হয় তবে বিন্যামীনকে তোমাদের সঙ্গে নাও| কিন্তু রাজ্যপালের জন্য কিছু উপহার নিয়ে য়েও| সেই সমস্ত জিনিস যা আমরা আমাদের দেশে সংগ্রহ করেছি তা নিয়ে যাও| তার জন্য মধু, পেস্তা, বাদাম, ধূনো, আঠা এবং সুগন্ধদ্রব্য এইসব নিয়ে যাও| 12 এইবার তোমাদের সঙ্গে দ্বিগুন টাকা নিও| গতবার দাম মেটাবার পর য়ে টাকা তোমাদের কাছে ফেরত্ এসেছিল তা সঙ্গে নাও| হতে পারে রাজ্যপালের ভুল হয়েছিল| 13 বিন্যামীনকে নিয়েই তার কাছে যাও| 14 আমার প্রার্থনা তোমরা যখন রাজ্যপালের সামনে দাঁড়াবে তখন য়েন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমাদের সাহায্য করেন| প্রার্থনা করি সে য়েন বিন্যামীন ও শিমিয়োনকে নিরাপদে ফিরে আসতে দেয| যদি তা না হয় তবে আমি পুত্র হারানোর শোকে আবার মুষড়ে পড়ব|” 15 তাই রা রাজ্যপালকে দেবার জন্য উপহারগুলো নিল আর সঙ্গে আগে যা নিয়েছিল তার দ্বিগুন টাকা নিল| এইবার বিন্যামীনও তার ভাইদের সাথে মিশরে গেল| 16 মিশরে য়োষেফ বিন্যামীনকে তার ভাইদের সঙ্গে দেখতে পেয়ে ভৃত্যদের বললেন, “ঐ লোকদের আমার বাড়ী নিয়ে এস| পশু মেরে রান্না কর| এই লোকরা আজ দুপুরে আমার সঙ্গে খাবে|” 17 ভৃত্যটি কথা মত কাজ করল| সে ঐ লোকদের য়োষেফের বাড়ীর ভিতর নিয়ে এল| 18 য়োষেফের বাড়ী যাবার সময় ভাইরা ভয় পেয়ে গেল| তারা বলল, “গতবার য়ে টাকা আমাদের বস্তায় ফেরত্ দেওয়া হয়েছিল তার জন্যই বোধহয় আমাদের এখানে আনা হচ্ছে| ঐ বিষযটিকেই আমাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করে তারা আমাদের গাধা কেড়ে নিয়ে আমাদের দাস করে রাখবে|” 19 তাই ভাইরা য়োষেফের বাড়ীর প্রধান ভৃত্যের কাছে গেল| 20 তারা বলল, “সত্যি বলছি গতবার আমরা শস্য কিনতে এসেছিলাম| 21 বাড়ী ফেরার পথে আমরা বস্তা খুলে প্রত্যেক বস্তায় আমাদের টাকা খুঁজে পেলাম| আমরা জানি না টাকা সেখানে কি করে এলো| কিন্তু আমরা সেই টাকা ফেরত্ দেবার জন্য নিয়ে এসেছি| আর এবারের শস্য কেনার জন্যও টাকা এনেছি|” 22 23 কিন্তু সেই ভৃত্য বলল, “ভয় পেও না, আমায় বিশ্বাস কর| তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পিতার ঈশ্বর নিশ্চয়ই উপহার হিসাবে সেই টাকা তোমাদের বস্তায় ফেরত্ দিয়েছেন| আমার মনে আছে তোমরা গতবার শস্যের জন্য দাম দিয়েছিলে|”তারপর সেই ভৃত্যটি শিমিয়োনকে কারাগার থেকে বের করে আনল| 24 ভৃত্যটি তাদের য়োষেফের বাড়ী নিয়ে গেল| সে তাদের জল দিলে তারা পা ধুয়ে নিল| তারপর সে তাদের গাধাদের খাবার খেতে দিল| 25 ভাইরা শুনতে পেল য়ে তারা য়োষেফের সঙ্গে খাবে| তাই তারা দুপুর পর্য্ন্ত তাদের উপহার সাজাল| 26 য়োষেফ বাড়ী ফিরলে ভাইয়েরা তাদের সঙ্গে করে আনা উপহার তাকে দিল| তারপর তারা হাঁটু গেড়ে তাকে প্রণাম করল| 27 য়োষেফ তারা কেমন আছে জিজ্ঞেস করলেন| তারপর বললেন, “তোমাদের বৃদ্ধ পিতা যার সম্বন্ধে আমাকে বলেছিলে তিনি কেমন আছেন? তিনি কি এখনও জীবিত আছেন?” 28 ভাইরা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, মহাশয়, আমাদের পিতা এখনও জীবিত আছেন|” তারপর তারা আবার য়োষেফের সামনে হাঁটু গেড়ে তাকে প্রণাম করল| 29 তখন য়োষেফ বিন্যামীনকে দেখতে পেলেন| (বিন্যামীন ও য়োষেফ ছিলেন এক মায়ের সন্তান|) য়োষেফ বললেন, “এই কি তোমাদের ছোট ভাই যার সম্বন্ধে তোমরা আমায় বলেছিলে?” তারপর য়োষেফ বিন্যামীনকে বললেন, “বত্স, ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করুন|” 30 সেই সময় য়োষেফ ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে গেলেন| য়োষেফ তাঁর ভাই বিন্যামীনকে য়ে ভালবাসেন তা প্রকাশ করতে চাইলেন| তাঁর কান্না পেল, কিন্তু তিনি চাইলেন না য়ে তাঁর ভাইরা তাকে কাঁদতে দেখুক| তাই য়োষেফ দৌড়ে তাঁর ঘরে গিয়ে কাঁদতে লাগলেন| 31 তারপর য়োষেফ তাঁর মুখ ধুয়ে বাইরে বেরিয়ে এলেন| নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বললেন, “এখন খাবার সময় হয়েছে|” 32 ভৃত্যেরা য়োষেফের জন্য একটা টেবিলে ব্যবস্থা করল| অন্য টেবিলে তার ভাইদের বসার ব্যবস্থা হল, এছাড়া মিশরীযদের জন্য আলাদা আরেকটা টেবিলে ব্যবস্থা করা হল| মিশরীযরা মনে মনে বিশ্বাস করত য়ে ইব্রীয়দের সঙ্গে বসে তাদের খাওয়াটা উচিত কাজ নয়| 33 য়োষেফের ভাইরা তার সামনের টেবিলেই বসল| ভাইরা ছোট থেকে বড়জন পরপর বসেছিল| কি ঘটছিল তাই ভেবে ভাইরা বিস্মযে একে অপরের দিকে চাইল| 34 ভৃত্যরা য়োষেফের টেবিল থেকে খাবার এনে তাদের দিচ্ছিল| তবে ভৃত্যরা বিন্যামীনকে অন্যদের চাইতে পাঁচগুণ বেশী খাবার দিল| ভাইরা য়োষেফের সঙ্গে খেল, পান করল য়ে পর্য্ন্ত না তারা প্রায় মত্ত হয়ে গেল|
1 তারপর য়োষেফ তাঁর ভৃত্যদের এক আদেশ দিয়ে বললেন, “ওদের প্রত্যেকের বস্তা বইবার ক্ষমতা অনুসারে শস্য ভর্তি করে দাও| আর প্রত্যেকের টাকাও তাদের শস্যের সঙ্গে রেখে দাও| 2 আমার ছোট ভাইয়ের বস্তায় তার টাকাটা রেখ এবং তার সঙ্গে আমার বিশেষ রূপোর পেয়ালাটাও রাখ|” ভৃত্যরা য়োষেফের কথা মত কাজ করল| 3 পরের দিন ভোরবেলা ভাইদের গাধায করে দেশে ফেরার জন্য বিদেয করা হল| 4 তারা শহর ছেড়ে বেরোলে য়োষেফ তার ভৃত্যকে বললেন, “যাও, ওদের পিছু নাও| ওদের থামিযে বল, ‘আমরা তোমাদের প্রতি কি ভাল ব্যবহার করি নি? তবে তোমরা কেন আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে? কেন তোমরা আমার মনিবের রূপোর পেয়ালা চুরি করলে? 5 আমার মনিব সেই পেয়ালা থেকে পান করেন এবং গণনার জন্যও ব্যবহার করেন| তোমরা যা করেছ তা অন্যায় কাজ|”‘ 6 ভৃত্যটি সেই মত কাজ করল| সে সেখানে পৌঁছে ভাইদের থামালো| য়োষেফ যা বলতে বলেছিলেন, ভৃত্যটি সেই মত কথা বলল| 7 কিন্তু ভাইরা ভৃত্যটিকে বলল, “রাজ্যপাল কেন এইরকম কথা বলছেন? আমরা সেইরকম কোন কাজ করতেই পারি না| 8 আমরা আমাদের বস্তায় য়ে টাকা আগের বার পেয়েছিলাম তা ফিরিযে এনেছিলাম| তাহলে নিশ্চয়ই আমরা তোমার মনিবের বাড়ী থেকে সোনা কি রূপা কিছুই চুরি করতে পারি না| 9 তুমি যদি সেই রূপোর পেয়ালা আমাদের কারও বস্তায় খুঁজে পাও তবে তার মৃত্যু হোক| তুমি তাকে তাহলে হত্যা এবং সেক্ষেত্রে আমরাও তোমার দাস হব|” 10 ভৃত্যটি বলল, “আমরা তোমাদের কথা মতই কাজ করব| কিন্তু আমি সেই জনকে হত্যা করব না| আমি রূপোর পেয়ালা খুঁজে পেলে সেই জন আমার দাস হবে, অন্যরা য়েতে পারে|” 11 তখন প্রত্যেক ভাই তাড়াতাড়ি মাটিতে নিজেদের বস্তা খুলে ফেলল| 12 ভৃত্যটি বস্তাগুলি দেখতে লাগল| জ্যেষ্ঠ থেকে শুরু করে কনিষ্ঠের বস্তা খুঁজে দেখলে বিন্যামীনের বস্তায় সেই পেয়ালা খুঁজে পাওয়া গেল| 13 ভাইরা এতে অত্যন্ত দুঃখিত হল| তারা তাদের শোক প্রকাশ করতে জামা ছিঁড়ে ফেলল| নিজেদের বস্তা আবার গাধায চাপিয়ে শহরে ফিরে চলল| 14 যিহূদা তার ভাইদের নিয়ে য়োষেফের বাড়ী গেল| য়োষেফ তখনও বাড়ীতে ছিলেন| ভাইরা তার সামনে মাটিতে পড়ে তাকে প্রণাম করল| 15 য়োষেফ তাদের বললেন, “তোমরা কেন এ কাজ করেছ| তোমরা কি জানতে না য়ে আমি গণনা করতে পারি| এ কাজে আমার থেকে ভালো কেউ নেই|” 16 যিহূদা বলল, “মহাশয়, আমাদের বলবার কিছুই নেই| ব্যাখ্যা করারও পথ নেই| আমরা য়ে নির্দোষ তা প্রমাণ করারও পথ নেই| অন্য কোন অন্যায় কাজের জন্য ঈশ্বর আমাদের বিচারে দোষী করেছেন| সেইজন্য আমরা সবাই এমনকি, বিন্যামীনও, আপনার দাস হব|” 17 কিন্তু য়োষেফ বললেন, “আমি তোমাদের সবাইকে দাস করব না| কেবল য়ে পেয়ালা চুরি করেছে সেই আমার দাস হবে| বাকী তোমরা তোমাদের পিতার কাছে শান্তিতে ফিরে যাও|” 18 তখন যিহূদা য়োষেফের কাছে গিয়ে বললেন, “মহাশয়, দয়া করে আমাকে সব কথা পরিস্কার করে আপনাকে বলতে দিন| দয়া করে আমার প্রতি রাগ করবেন না| আমি জানি আপনি ফরৌণের সমান| 19 আমরা আগে যখন এখানে এসেছিলাম তখন আপনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তোমাদের একজন পিতা আর ভাই আছে কি?’ 20 আমরা আপনাকে উত্তর দিয়েছিলাম, ‘আমাদের এক পিতা আছেন, তিনি বৃদ্ধ| আমাদের এক ছোট ভাই রয়েছে| আমাদের পিতা তাকে ভালবাসেন কারণ সে তার বৃদ্ধ বয়সের সন্তান| আর সেই ছোট ভাইয়ের নিজের এক ভাই মারা গেছে| তাই তার মায়ের পুত্রদের মধ্যে একমাত্র সেই বেঁচে আছে এবং তার পিতা তাকে খুব ভালবাসেন| 21 তারপর আপনি বললেন, “তবে সেই ভাইকেই আমার কাছে নিয়ে এস| আমি তাকে দেখতে চাই|’ 22 আর আমরা আপনাকে বললাম, ‘সেই ছোট ভাই পিতাকে ছেড়ে আসতে পারে না| আর পিতা তাকে হারালে শোকেতে মারাই যাবেন|’ 23 কিন্তু আপনি আমাদের বললেন, ‘তোমাদের অবশ্যই সেই ভাইকে আনতে হবে নতুবা আমি শস্য বিক্রি করব না|’ 24 তাই আমরা ফিরে গিয়ে আপনি যা বলেছিলেন তা আমাদের পিতাকে জানালাম| 25 “পরে আমাদের পিতা বললেন, ‘যাও, গিয়ে আরও কিছু শস্য কিনে আনো|’ 26 আর আমরা পিতাকে বললাম, ‘আমরা ছোট ভাইকে না নিয়ে য়েতে পারি না| রাজ্যপাল বলেছেন ছোট ভাইকে না দেখলে তিনি আমাদের কাছে শস্য বিক্রি করবেন না|’ 27 তখন আমাদের পিতা বললেন, ‘তোমরা জান আমার স্ত্রী রাহেলের দুটি সন্তান হয়|’ 28 তাদের একজনকে আমি য়েতে দিলে বন্য জন্তু তাকে মেরে ফেলল| সেই থেকে আর কখনও তাকে দেখিনি| 29 তোমরা যদি অন্য জনকেও আমার কাছে থেকে নিয়ে যাও আর তার যদি কিছু ঘটে তাহলে আমি শোকে মারা যাব|’ 30 এখন ভেবে দেখুন ছোট ভাইকে নিয়ে বাড়ী না ফিরলে কি ঘটবে - এই ছোট ভাই পিতার প্রাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ! 31 ছোট ভাইকে আমাদের সঙ্গে না দেখলে আমাদের পিতার মারাই যাবেন আর দোষটা হবে আমাদেরই| তাহলে আমরা আমাদের বৃদ্ধ পিতাকে এই দুঃখের কারণে মেরে ফেলব| 32 “এই ছোট ভাইয়ের দায়িত্ব আমিই নিয়েছিলাম| আমি পিতাকে বলেছিলাম, ‘আমি যদি তাকে তোমার কাছে ফিরিযে না আনি তবে সারাজীবন আমি অপরাধী হয়ে থাকব|’ 33 তাই এখন আমার এই ভিক্ষা, দয়া করে ছোট ভাইকে তার ভাইদের সঙ্গে ফিরতে দিন| আর আমি এখানে আপনার দাস হয়ে থাকি| 34 ঐ ছোট ভাই না ফিরলে আমি পিতাকে মুখ দেখাতে পারবো না| ভেবে ভয় পাচ্ছি আমার পিতার কি হবে|”
1 য়োষেফ আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলেন না| তিনি সেখানে উপস্থিত সমস্ত লোকের সামনে কেঁদে উঠলেন এবং বললেন, “সবাইকে চলে য়েতে বলো|” তাই সব লোক চলে গেল| কেবল য়োষেফের ভাইয়েরা সঙ্গে রইল| তখন য়োষেফ নিজের পরিচয দিলেন| 2 য়োষেফ খুব উচ্চস্বরে কাঁদছিলেন, আর ফরৌণের বাড়ীর সমস্ত মিশরীযরা তা শুনতে পেল| 3 য়োষেফ তাঁর ভাইদের বললেন, “আমি তোমাদের বাই য়োষেফ| আমার পিতা ভাল আছেন তো?” কিন্তু ভাইয়েরা উত্তর দিল না কারণ তারা হতবুদ্ধি হলেন, ভয় পেলেন| 4 তাই য়োষেফ আবার তাঁর ভাইদের বললেন, “এখানে আমার কাছে এস| দয়া করে এখানে এস|” তাই ভাইরা য়োষেফের কাছে গেল| য়োষেফ তাদের বললেন, “আমি তোমাদের ভাই য়োষেফ| আমিই সেই, যাকে তোমরা দাস হিসাবে মিশরের জন্য বেচে দিয়েছিলে|” 5 এখন চিন্তা কর না| তোমরা যা করেছিলে তার জন্য রাগও কর না| ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুসারেই আমি এখানে এসেছি| আমি তোমাদের প্রাণ বাঁচাতেই এখানে এসেছি| 6 দুর্ভিক্ষের কেবল দুটো বছরই কেটেছে| এখনও আরও পাঁচ বছর কোন চাষ হবে না, ফসলও ফলবে না| 7 সুতরাং ঈশ্বর আমাকে তোমাদের আগেই এখানে পাঠিয়েছেন যাতে আমি তোমাদের লোকজনদের এই দেশে এনে বাঁচাতে পারি| 8 আমাকে য়ে এখানে পাঠানো হয়েছে তাতে তোমাদের দোষ নেই| এ ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনা| ঈশ্বরই আমাকে ফরৌণের পিতার স্থানে বসিযেছেন| আমি তার সমস্ত বাড়ীর সমস্ত মিশর দেশের রাজ্যপাল হয়েছি|” 9 য়োষেফ বলল, “তোমরা তাড়াতাড়ি আমার পিতার কাছে যাও| তাঁকে বল তার পুত্র য়োষেফ এই বার্তা পাঠিয়েছে|”ঈশ্বর আমাকে মিশরের রাজ্যপাল করেছেন| তাই এখানে আমার কাছে চলে আসুন| দেরী করবেন না| এখনই চলে আসুন| 10 আপনি আমার কাছাকাছি গোশন প্রদেশে থাকতে পারেন| আপনি, আপনার সন্তানরা, আপনার নাতিনাতনিরা এবং আপনার সমস্ত পশুদেরও নিয়ে আসুন| 11 দুর্ভিক্ষের পরের পাঁচ বছর আমি আপনার যত্ন নেব| ফরে আপনি এবং আপনার পরিবারের যা আছে তার কিছুই হারিযে যাবে না| 12 য়োষেফ তার ভাইদের বললেন, “আমি য়ে সত্যি সত্যিই য়োষেফ তা তোমরা চোখেই দেখছ| এখন আমার ভাই বিন্যামীনও জানে য়ে আমি তোমাদের ভাই, তোমাদের সঙ্গে কথা বলছি| 13 আমি মিশর দেশে য়ে সম্মান অর্জন করেছি সে সম্বন্ধে পিতাকে বোল| এখানে তোমরা যা যা দেখছ সে সম্বন্ধে তাঁকে বোল| এবার ওঠ, যত তাড়াতাড়ি পার আমার পিতাকে এখানে নিয়ে এস|” 14 এরপর য়োষেফ বিন্যামীন বুকে জড়িয়ে ধরে দুজনেই কাঁদতে লাগলেন| 15 য়োষেফ অন্যান্য ভাইদেরও চুমু খেয়ে কাঁদলেন| এরপর ভাইরা তারা সঙ্গে কথা বলতে শুরু করল| 16 ফরৌণও জানতে পারলেন য়ে য়োষেফের ভাইরা তার কাছে এসেছে| এই খবর ফরৌণের সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়লে ফরৌণ ও তাঁর দাসরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট হলেন| 17 ফরৌণ য়োষেফকে বললেন, “তোমার ভাইদের বল তাদের য়ে পরিমাণ শস্যের প্রয়োজন তা নিয়ে য়েন কনান দেশে যায়| 18 আরও বল য়েন তারা তাদের পিতা এবং তাদের পরিবারের সবাইকে নিয়ে আমার কাছে এইখানে ফিরে আসে| আমি তোমাদের বাস করার জন্য মিশরে সব চাইতে ভাল জমি দেব| আর তোমার পরিবার এখানকার সব চেযে ভাল খাবার খেতে পাবে|” 19 তারপর ফরৌণ বললেন, “আমাদের মালবাহী গাড়ীগুলোর মধ্যে য়েগুলো ভালো তার কিছু তোমার ভাইদের দাও| তাদের বলো য়েন, তারা কনান দেশে গিয়ে তাদের পিতা এবং নিজের নিজের স্ত্রী ও পুত্র কন্যা নিয়ে গাড়ী করে ফিরে আসে| 20 সেখান থেকে তাদের সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে আসার ব্যাপারে তারা য়েন চিন্তা না করে, কারণ মিশরের সমস্ত উত্তম জিনিস তাদের|” 21 ইস্রাযেলের সন্তানরা তাই করলেন| ফরৌণ য়েমন আদেশ করেছিলেন সেই মতন য়োষেফ তাদের ভালো কিছু মালবাহী গাড়ী দিলেন আর যাত্রার জন্য য়থেষ্ট খাবারও দিলেন| 22 য়োষেফ তাঁর প্রত্যেক ভাইকে সুন্দর জামা জোড়াও দিলেন| কিন্তু য়োষেফ বিন্যামীনকে দিলেন পাঁচ জোড়া জামা আর 300 রৌপ্য মুদ্রা, 23 য়োষেফ তাঁর পিতার জন্যও উপহার পাঠালেন| তিনি দশটা গাধার পিঠে বস্তা ভরে মিশরের বহু উত্তম জিনিস পাঠালেন| আর তার পিতার ফেরবার পথে যাত্রার জন্য আরও দশটি স্ত্রী গাধার পিঠে করে শস্য, রুটি এবং অন্যান্য খাবার পাঠালেন| 24 তারপর য়োষেফ তাঁর ভাইদের বিদায দিলেন| আর তারা যখন পথে যাচ্ছে য়োষেফ তাদের বললেন, “সোজা বাড়ী যাও| পথে ঝগড়া কর না|” 25 তাই তারা মিশর দেশ ছেড়ে তাদের পিতার কাছে কনান দেশে গিয়ে পৌঁছাল| 26 ভাইরা বলল, “পিতা য়োষেফ এখনও জীবিত! আর তিনিই সমস্ত মিশরের নিযুক্ত রাজ্যপাল|” তাদের পিতা এই শুনে হতবুদ্ধি হয়ে রইলেন; প্রথমে তো তাঁর বিশ্বাসই হল না| 27 কিন্তু তারপর তারা য়োষেফ যা বলেছিলেন তা বলল| আর য়োষেফ তাঁকে মিশর দেশে নিয়ে যাবার জন্য মালবাহী গাড়ীগুলো পাঠিযছিলেন তা যখন যাকোব দেখলেন, তখন তিনি আনন্দে উত্তেজিত হয়ে উঠলেন| 28 ইস্রায়েল বললেন, “এবার আমি তোমাদের কথা বিশ্বাস করছি| আমার পুত্র য়োষেফ এখনও বেঁচে আছে! আহা, মৃত্যুর আগে আমি তাকে দেখতে পাব!”
1 ইস্রায়েল মিশর দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন| প্রথমে তিনি বের্-শেবাতে গেলেন| সেখানে ইস্রায়েল তাঁর পিতা ইসহাকের ঈশ্বরের উপাসনা করলেন এবং বলি দিলেন| 2 রাত্রে ঈশ্বর স্বপ্নে যাকোবের সঙ্গে কথা বললেন| ঈশ্বর বললেন, “যাকোব, যাকোব|”ইস্রায়েল উত্তর দিলেন, “এই য়ে আমি|” 3 তখন ঈশ্বর বললেন, “আমি ঈশ্বর, তোমার পিতার ঈশ্বর! মিশরে য়েতে ভয় কোর না| মিশরে আমি তোমাকে এক মহাজাতিতে পরিণত করব| 4 আমি তোমার সঙ্গে মিশরে যাব আর তোমাকে সেখান থেকে ফিরিযে আনব| তুমি মিশরে মারা যাবে কিন্তু য়োষেফ তোমার সঙ্গে থাকবে| তুমি মারা গেলে য়োষেফই তার নিজের হাত দিয়ে তোমার চোখ বুজিযে দেবে|” 5 তারপর যাকোব বের্-শেবা ছেড়ে মিশরের দিকে যাত্রা করলেন| ইস্রাযেলের পুত্ররা নিজেদের পিতা যাকোবকে এবং প্রত্যেকে নিজের পুত্র কন্যা ও স্ত্রীদের নিয়ে মিশরে চললেন| ফরৌণ য়ে মালবাহী গাড়ীগুলো পাঠিয়েছিলেন সেইগুলো করেই তাঁরা গেলেন| 6 তাঁরা তাঁদের পশুপাল এবং কনান দেশে তাদের যা যা ছিল সব নিয়ে চললেন| সুতরাং ইস্রায়েল মিশরে তার সমস্ত সন্তান এবং তাদের পরিবার নিয়েই গেলেন| 7 তাঁর সঙ্গে ছিল তাঁর পুত্ররা এবং নাতিরা, তাঁর কন্যারা এবং নাতনিরা| সুতরাং তাঁর সমস্ত পরিবার তাঁর সাথে মিশরে গেলেন| 8 ইস্রাযেলের পুত্ররা এবং তার বংশধররা যারা তাঁর সঙ্গে মিশরে গিয়েছিলেন তাদের নামগুলি এই: ়বূবেণ ছিলেন জ্যেষ্ঠ পুত্র| 9 রূবেণের পুত্ররা ছিলেন হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্মি| 10 শিমিযোনের পুত্ররা ছিলেন য়িমূযেল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর এছাড়া শৌল| (শৌলের মা ছিলেন একজন কনানীয স্ত্রীলোক|) 11 লেবীর পুত্ররা ছিলেন গের্শোন, কহাত্ ও মরারি| 12 যিহূদার পুত্ররা হলেন এর, ওনন, শেলা, পেরস ও সেরহ| (এর ও ওনন কনান দেশেই মারা গিয়েছিল|) পেরসের পুত্ররা হলেন হিষ্রোণ ও হামূল| 13 ইষাখরের পুত্ররা হলেন তোলয, পুয, য়োব ও শিম্রোণ| 14 সবূলূনের পুত্ররা হলেন সেরদ, এলোন ও মহলোল| 15 রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূলূন এনারা ছিলেন যাকোব ও লেয়ার সন্তানগণ| পদ্দম্-অরামে লেয়ার এই সন্তানরা জন্মেছিল| তার দীনা নামে একটি কন্যাও ছিল| তার পরিবারে মোট সদস্য সংখ্যা ছিল 33 জন| 16 গাদের পুত্ররা ছিলেন সিফিযোন, হগি, শূনী, ইষ্ বোন, এরি, অরোদী ও অরেলী| 17 আশেরের পুত্ররা ছিলেন য়িম্না, য়িশ্বা, য়িশবি, বরিয এবং তাদের বোন সেরহ| বরিযের পুত্ররা অর্থাত্ হেবর ও মল্কীযেলও ছিলেন| 18 যাকোবের এই পুত্ররা ছিলেন তার স্ত্রী দাসী সিল্পার| (সিল্পাই সেই দাসী যাকে লাবন তার কন্যা লেয়ার সাথে দিয়েছিলেন|) তার পরিবারের মোট সদস্য ছিলেন 16 জন| 19 বিন্যামীনও যাকোবের সঙ্গে ছিলেন| বিন্যামীন ছিলেন যাকোব ও রাহেলের পুত্র| (য়োষেফও রাহেলের পুত্র| কিন্তু য়োষেফ ইতিমধ্যে মিশরে ছিলেন|) 20 মিশরে য়োষেফের দুই পুত্র হয়| তাদের নাম মনঃশি ও ইফ্রয়িম| (য়োষেফের স্ত্রীর নাম ছিল আসমত্| তিনি ছিলেন ওন শহরের যাজক পোটীফর এর কন্যা| 21 বিন্যামীনের পুত্ররা হল বেলা, বেখর, অস্ বেল, গেরা, নামন, এহী, রোশ, মুপ্পীম, হুপ্পীম ও অর্দ| 22 এনারা ছিলেন যাকোব ও তার স্ত্রী রাহেলের সন্তান| পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা 14 জন| 23 দানের পুত্র ছিলেন হূশীম| 24 নপ্তালির পুত্র ছিলেন য়হসিযেল, গূনি, বেত্সর ও শিল্লেম| 25 এঁরা ছিলেন যাকোব ও বিল্হার সন্তান| (বিল্হা-ই সেই দাসী যাকে লাবন তার কন্যা রাহেলের সাথে পাঠিয়েছিলেন|) এই পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল সাত| 26 সরাসরি যাকোব হতে উত্পন্ন উত্তরপুরুষদের মোট 66জন তার সঙ্গে মিশরে গিয়েছিলেন| (এই সংখ্যার মধ্যে যাকোবের পুত্রদের স্ত্রীদের গণনা করা হয় নি|) 27 আবার য়োষেফেরও দুই সন্তান ছিলেন য়াঁরা মিশরে জন্মেছিলেন| সুতরাং মিশরে যাকোবের পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা হল 70 জন| 28 য়োষেফের সঙ্গে কথা বলার জন্য যাকোব যিহূদাকে তাঁর আগে পাঠালেন| এর পরে যাকোব এবং তাঁর পুত্ররা গোশন প্রদেশে পৌঁছোলেন| যিহূদা গোশন প্রদেশে য়োষেফের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন| যাকোব এবং তাঁর পরিবারের লোকজন এরপর সেই প্রদেশে পৌঁছালেন| 29 য়োষেফ যখন শুনলেন য়ে তাঁর পিতা আসছেন তখন তিনি রথ প্রস্তুত করে গোশন প্রদেশে তাঁর পিতা ইস্রাযেলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| য়েষেফ তাঁর পিতাকে দেখে গলা জড়িয়ে ধরে বহুক্ষণ কাঁদলেন| 30 তখন ইস্রায়েল য়োষেফকে বললেন, “এখন আমি শান্তিতে মরতে পারব| আমি তোমার মুখ দেখলাম এবং জানলাম য়ে তুমি এখনও জীবিত|” 31 য়োষেফ তাঁর ভাইদের এবং পিতার পরিবারের বাকীদের বললেন, “আমি ফরৌণকে বলতে যাচ্ছি য়ে তোমরা এখানে এসেছ| আমি ফরৌণকে বলব, ‘আমার ভাইরা এবং পিতার পরিবারের বাকী সবাই কনান দেশ ছেড়ে এখানে আমার কাছে এসেছেন| 32 পরিবারের সবাই মেষপালক| তারা বরাবরই মেষপাল ও গো-পাল রেখে থাকেন| তারা তাদের পশু ও আর যা কিছু তাদের ছিল সবই তাদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন| 33 ফরৌণ তোমাদের ডাকলে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমরা কি কাজ কর?’ 34 তোমরা তাকে বলবে, ‘আমরা মেষপালক| সারাজীবন ধরেই আমরা মেষ পালন করে আসছি| আমাদের আগে আমাদের পিতৃপুরুষরা মেষপালক ছিলেন|’ ফরৌণ তোমাদের গোশন প্রদেশে থাকতে দেবেন| মিশরীযরা মেষপালকদের পছন্দ করেন না, সেইজন্য তোমাদের গোশন প্রদেশে থাকাটাই ভাল হবে|”
1 য়োষেফ ফরৌণের কাছে গিয়ে বললেন, “আমার পিতা, আমার ভাইরা এবং তাদের পরিবারের সবাই এখানে এসেছেন| তারা তাদের পশু ও সর্বস্ব নিয়ে কনান দেশ থেকে চলে এসেছেন| তাঁরা এখন গোশন প্রদেশে রয়েছেন|” 2 ফরৌণের সামনে যাবার জন্য ভাইদের মধ্যে পাঁচজনকে মনোনীত করলেন| 3 ফরৌণ ভাইদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা কি কাজ কর?”ভাইরা ফরৌণকে বলল, “মহাশয় আমরা মেষপালক| আর আমাদের আগে আমাদের পূর্বপুরুষরাও মেষপালক ছিলেন|” 4 তারা ফরৌণকে বলল, “কনান দেশে ভযাবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছে| তাই পশুদের খাবার ঘাসের অভাব হয়েছে| তাই আমরা এই দেশে বাস করব বলে এখানে এসেছি| দয়া করে আমাদের গোশন প্রদেশে থাকতে দিন|” 5 তখন ফরৌণ য়োষেফকে বললেন, “তোমার পিতা ও তোমার ভাইরা তোমার কাছে এসেছেন| 6 তাদের থাকবার জন্য তুমি মিশরে য়ে কোন জায়গা বেছে নিতে পারো| তোমার পিতা এবং তোমার ভাইদের সব চাইতে ভাল জমিটা দিও| তাদের গোশন প্রদেশে বাস করতে দাও| আর তারা যদি দক্ষ মেষপালক হয় তবে তারা আমার পশুপালেরও যত্ন নিতে পারে|” 7 তখন য়োষেফ তাঁর পিতাকে ফরৌণের সঙ্গে দেখা করবার জন্য ডেকে আনলেন| যাকোব ফরৌণকে আশীর্বাদ করলেন| 8 ফরৌণ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার বয়স কত?” 9 যাকোব ফরৌণকে বললেন, “আমার আযুর এই অল্প বয়সে আমাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে| আমি কেবল 130 বছর বযস্ক| আমার পিতা এবং আমার পূর্বপুরুষরা আমার চাইতেও বেশী বয়স বেঁচ্ছেেন|” 10 যাকোব ফরৌণকে আশীর্বাদ করলেন এবং তাঁর সামনে থেকে বিদায নিলেন| 11 ফরৌণের কথামত য়োষেফ তাঁর পিতা ও ভাইদের মিশরে জমিজমা দিলেন| রামিষেষ শহরের কাছে স্থিত সেই জমি মিশরের সব জমির চেযে সেরা ছিল| 12 আর য়োষেফ তাঁর পিতা, তাঁর ভাইদের এবং তার সমস্ত পরিজনদের তাদের প্রযোজনীয খাদ্য সরবরাহ করলেন| 13 দুর্ভিক্ষ আরও ভযাবহ হয়ে উঠল| ফলে দেশে কোথাও কোন খাদ্য রইল না| এই দরুণ দুর্ভিক্ষের জন্যে মিশর এবং কনান দেশ দরিদ্র হয়ে পড়ল| 14 দেশের লোকরা আরও শস্য কিনতে থাকল আর য়োষেফ সেই অর্থ জমিযে ফরৌণের কাছে নিয়ে আসতেন| 15 কিছু পরে মিশরীয এবং কনানীযদের সব অর্থ শেষ হয়ে গেল| কারণ তারা সমস্ত অর্থই শস্য কিনতে ব্যয করেছিল| তাই মিশরীযরা য়োষেফের কাছে গিয়ে বলল, “আমাদের খাদ্য দিন| আমাদের অর্থ শেষ হয়ে গেছে| আমরা খেতে না পেলে আপনার চোখের সামনে মারা যাব|” 16 কিন্তু য়োষেফ উত্তর দিলেন, “তোমাদের গো-পাল দাও, আমি তোমাদের খাবার দেব|” 17 এইভাবে খাদ্য কেনার জন্য লোকরা তাদের গো-পাল, ঘোড়া এবং অন্যান্য পশুর ব্যবহার করলেন| সেই বছরে য়োষেফ পশুর বদলে তাদের খাদ্য দিলেন| 18 কিন্তু পরের বছরে লোকদের খাবার কেনার জন্য পশু এবং অন্য কিছু ছিল না| তাই লোকরা য়োষেফের কাছে গিয়ে বলল, “আপনি জানেন আমাদের কাছে আর কোন অর্থ নেই| আর আমাদের সব পশুও এখন আপনারই| সুতরাং আপনি যা দেখছেন আমাদের সেই দেহ ও আমাদের জমি ছাড়া আমাদের কাছে আর কিছুই নেই| 19 সত্যিই আমরা আপনার চোখের সামনে মারা যাব| কিন্তু আপনি আমাদের খাদ্য দিলে আমরা ফরৌণকে আমাদের জমি দেব এবং আমরা তার দাস হব| আমাদের বপন করার বীজ দিন| তাহলে আমরা মরব না| আর জমিতে আবার আমাদের জন্য শস্য হবে|” 20 তাই য়োষেফ মিশরের সমস্ত জমি ফরৌণের জন্য কিনে নিলেন| লোকরা ক্ষুধার জন্য মিশরের সমস্ত জমি ফরৌণের কাছে বিক্রি করে দিল| 21 আর মিশরের সর্বত্র লোকরা ফরৌণের দাস হল| 22 য়োষেফ কেবল যাজকদের জমি কিনলেন না| যাজকদের জমি বিক্রি করারও প্রয়োজন ছিল না| কারণ ফরৌণ তাদের কাজের জন্য পারিশ্রমিক দিতেন আর তারা সেই অর্থ দিয়ে খাদ্য কিনত| 23 য়োষেফ লোকদের বললেন, “এখন আমি তোমাদের এবং তোমাদের জমি ফরৌণের জন্য কিনে নিয়েছি| তাই আমি এরপর তোমাদের জমিতে বপন করার বীজ দেব| আর তোমরা তা বপন করতে পার| 24 শস্য ছেদনের সময় তোমরা অবশ্যই উত্পন্ন শস্যের পাঁচ ভাগের এক ভাগ ফরৌণকে দেবে| বাকী পাঁচ ভাগের চার ভাগ শস্য তোমাদের হবে| তোমরা তোমাদের খাদ্যের জন্য সেই রাখা শস্যের বীজ পরের বছর বপন করার জন্য ব্যবহার করতে পারবে| আর তাতে তোমাদের পরিবার ও সন্তানদের জন্যও খাদ্য থাকবে|” 25 লোকরা বলল, “আপনি আমাদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন| আমরা ফরৌণের দাস হয়ে খুশী|” 26 তাই য়োষেফ সেই সময় জমির ব্যাপারে আইন তৈরী করলেন| আর সেই আইন আজও বলবত্ রয়েছে| সেই আইন অনুযায়ীজমিতে উত্পন্ন সবকিছুর পাঁচ ভাগের এক ভাগ ফরৌণের| যাজকদের জমি ছাড়া সমস্ত জমি ফরৌণের|” 27 ইস্রায়েল মিশরের গোশন প্রদেশেই স্থায়ী হলেন| তাঁর পরিবার সংখ্যার বৃদ্ধি পেল এবং বিশাল হয়ে উঠল| মিশর দেশে তাঁরা কিছু জমি পেলেন এবং সফল হলেন| 28 যাকোব মিশরে 17 বছর বেঁচে ছিলেন সুতরাং তাঁর বয়স হল 147 বছর| 29 সময় হল যখন ইস্রায়েল বুঝলেন য়ে তিনি শীঘ্রই মারা যাবেন| তাই তিনি তাঁর পুত্র য়োষেফকে নিজের কাছে ডাকলেন| তিনি বললেন, “যদি তুমি আমায় ভালবাস তবে আমার উরুর নীচে হাত রাখ এবং প্রতিজ্ঞা কর য়ে তুমি তোমার কথায় বিশ্বস্ত হবে| আমি মারা গেলে আমায় মিশরে কবর দিও না| 30 য়ে জায়গায় আমার পূর্বপুরুষদের কবর দেওয়া হয়েছে সেখানেই আমায় কবর দিও| আমাকে মিশর থেকে বয়ে নিয়ে গিয়ে আমাদের পারিবারিক কবরে কবর দিও|”য়োষেফ উত্তর দিলেন, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি আপনার কথা মতোই কাজ করব|” 31 তারপর যাকোব বললেন, “আমার কাছে দিব্য কর|” তখন ইস্রায়েল বিছানায তার মাথা নামিযে ঈশ্বরের উপাসনা করলেন|”
1 কিছু সময় পরে য়োষেফ জানতে পারলেন য়ে তাঁর পিতা খুব অসুস্থ| তাই য়োষেফ তাঁর দুই পুত্র মনঃশি ও ইফ্রয়িমকে নিয়ে তাঁর পিতার কাছে গেলেন| 2 য়োষেফ সেখানে পৌঁছালে ইস্রায়েলকে কেউ খবর দিলেন, “আপনার পুত্র য়োষেফ আপনাকে দেখতে এসেছেন|” ইস্রায়েল খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তিনি খুব চেষ্টা করে কোন মতে বিছানায উঠে বসলেন| 3 তখন ইস্রায়েল য়োষেফকে বললেন, “কনান দেশের লূস নামক জায়গায় সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন| সেখানে ঈশ্বর আমায় আশীর্বাদ করেছিলেন| 4 ঈশ্বর আমায় বলেছিলেন, “আমি তোমাকে বহু বংশ করব| তোমার অনেক সন্তানসন্ততি হবে এবং তারা মহান হবে| এই দেশ তোমার বংশধররা চিরকালের জন্য তাদের অধিকারে রাখবে|” 5 আর এখন তোমার দুই পুত্র, আমার আসার আগেই মিশর দেশে এদের জন্ম হয়েছিল| তোমরা দুই পুত্র মনঃশি ও ইফ্রয়িম আমার কাছে নিজের পুত্রের মতই হোক| তারা আমার কাছে রূবেণ ও শিমিয়োনের মত হোক| 6 সুতরাং ঐ দুই জন পুত্র আমারই হোক| তারা আমার সব কিছুর অংশীদার হবে| কিন্তু এছাড়া তোমার যদি আর অন্য পুত্র থাকে তবে তা তোমারই হোক| আর তারা ইফ্রয়িম ও মনঃশির কাছে সন্তানের মতই হোক - অর্থাত্ ভবিষ্যতে তারা ইফ্রয়িম ও মনঃশির অধিকারভুক্ত সব কিছুরই অংশীদার হবে| 7 পদ্দম্-অরাম থেকে আসার সময় রাহেল মারা গেলেন| এই ঘটনায আমি অত্যন্ত দুঃখ পেলাম| আমরা যখন ইফ্রাথের দিকে যাচ্ছিলাম তখন কনান দেশে তিনি মারা গেলেন| আমি তাকে সেখানে ইফ্রাথ যাবার পথের ধারে কবর দিলাম| (ইফ্রাথ বৈত্লেহেমের অপর নাম|)” 8 তখন ইস্রায়েল য়োষেফের পুত্রদের দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই বালকরা কারা?” 9 য়োষেফ তাঁর পিতাকে বললেন, “এরা আমার পুত্ররা, ঈশ্বরই এদের আমায় দিয়েছেন|”ইস্রায়েল বললেন, “তোমার ছেলেদের আমার কাছে নিয়ে এস| আমি তাদের আশীর্বাদ করব|” 10 ইস্রায়েল বৃদ্ধ হয়েছিলেন এবং চোখেও ভালো দেখতে পেতেন না| তাই য়োষেফ দুই পুত্রকে পিতার খুব কাছে নিয়ে এলেন| ইস্রায়েল তাদের গলা জড়িয়ে চুমু খেলেন| 11 তারপর ইস্রায়েল য়োষেফকে বললেন, “আমি ভাবতেই পারি নি য়ে কখনও তোমার মুখ দেখতে পাব| কিন্তু দেখ! ঈশ্বর আমাকে তোমার এমনকি তোমার পুত্রদেরও দেখতে দিলেন|” 12 তারপর য়োষেফ ইস্রায়েলের কোল থেকে তার পুত্রদের নিলেন এবং তারা ইস্রায়েলের সামনে মাথা নত করল| 13 য়োষেফ ইফ্রয়িমকে তার ডানদিকে এবং মনঃশিকে তার বাঁ দিকে রাখলেন| (সুতরাং ইফ্রয়িম ইস্রায়েলের বাম দিকে ও মনঃশি তার ডান দিকে রইল|) 14 কিন্তু ইস্রায়েল তাঁর হাত আড়াআড়ি ভাবে রেখে তার ডান হাত ছোট পুত্র ইফ্রয়িমের মাথায় রাখলেন| ইস্রায়েল তার বাম হাত বড় পুত্র মনঃশির মাথায় রাখলেন| মনঃশি প্রথমজাত হলেও তিনি বাম হাত তার উপরে রাখলেন| 15 ইস্রায়েল য়োষেফকে আশীর্বাদ করে বললেন,“আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইসহাক আমাদের ঈশ্বরের উপাসনা করতেন| আর সেই ঈশ্বরই সারা জীবন আমায় গ্রহণ করেছেন| 16 তিনিই সেই দেবদূত যিনি আমায় সব সমস্যা থেকে রক্ষা করেছেন| আমার প্রার্থনা, তিনিই এই পুত্রদের আশীর্বাদ করবেন| এখন এই পুত্ররা আমার এবং আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইসহাকের নামে আখ্যাত হোক| আমার প্রার্থনা তারা য়েন পৃথিবীতে বৃদ্ধি পযে বহু বংশ ও বহু জাতি হয়|” 17 য়োষেফ যখন দেখলেন তাঁর পিতা ডান হাত ইফ্রয়িমের মাথায় রেখেছেন, তখন তিনি খুশী হলেন না| য়োষেফ পিতার হাত ইফ্রযিমের মাথা থেকে তুলে ধরে মনঃশির মাথায় রাখতে চাইলেন| 18 য়োষেফ তার পিতাকে বললেন, “আপনি আপনার ডান হাত ভুল জনের মাথার উপর রেখেছেন| মনঃশিই প্রথমজাত| তার উপরেই ডান হাত রাখুন|” 19 কিন্তু তাঁর পিতা তর্ক করে বললেন, “আমি জানি বত্স, আমি জানি| মনঃশি প্রথমজাত সে মহান হবে, বহুলোকের পিতা হবে কিন্তু ছোট জন বড় জনের চেয়েও মহান হবে আর তার বংশ আরও অনেক হবে|” 20 তাই ইস্রায়েল সেই দিন এই বলে আশীর্বাদ করলেন,“ইস্রায়েল কাউকে আশীর্বাদ করতে তোমাদেরই নাম ব্যবহার করবে| তারা বলবে, “ঈশ্বর তোমাকে য়েন মনঃশি ও ইফ্রযিমের মতো করেন|”এইভাবে ইস্রায়েল মনঃশির চাইতে ইফ্রয়িমকে বড় করলেন| 21 তারপর ইস্রায়েল য়োষেফকে বললেন, “দেখ আমার মৃত্যুর সময় কাছে এসে গেছে| কিন্তু ঈশ্বর তোমার সঙ্গে থাকবেন| তিনিই তোমাকে আবার তোমার পূর্বপুরুষদের দেশে নিয়ে যাবেন| 22 আমি তোমাকে যা দিলাম তা তোমার ভাইদের দিই নি| ইমোরীয়দের হাত থেকে য়ে পাহাড় আমি জয় করে নিয়েছিলাম তা তোমায় দিচ্ছি| আমি সেই পাহাড় জয় করতে আমার তরবারি ও ধনুক ব্যবহার করেছিলাম এবং আমি জয়ী হয়েছিলাম|”
1 এরপর যাকোব তাঁর পুত্রদের তার কাছে ডাকলেন এবং বললেন, “আমার বাছারা এখানে আমার কাছে এস| ভবিষ্যতে কি ঘটবে তা আমি তোমাদের বলছি| 2 “যাকোবের পুত্ররা এস, একসাথে এসে শোন তোমাদের পিতা ইস্রায়েল কি বলছেন|” 3 “রূবেণ আমার প্রথম জাত, তুমিই তো আমার প্রথম সন্তান, পুরুষ হিসাবে আমার শক্তির প্রথম প্রমাণ| তুমি আমার সন্তানদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত এবং শক্তিমান| 4 কিন্তু বন্যার মত তোমার কামেচ্ছা, তুমি তা দমন করো নি| সেইজন্য তুমি সম্মানিত সন্তান হিসাবে তোমার প্রাধান্য হারাবে| তুমি তোমার পিতার শয়্য়ায উঠেছিলে আর তার এক স্ত্রীর সাথে শুয়েছিলে| তুমি সেই শয়্য়ায ঘুমিযেছ এবং সেই শয়্য়াকে অপবিত্র করেছ|” 5 “শিমিয়োন ও লেবি ভাই ভাই| তারা য়োদ্ধা এবং তারা তাদের তরবারি নিয়ে য়ুদ্ধ করতে ভালবাসে| 6 তারা গোপনে মন্দ বিষয পরিকল্পনা করল| আমার আত্মা তাদের পরিকল্পনার অংশ নেবে না| তাদের গোপন সত্য আমি স্বীকার করব না| তারা রাগে মানুষ হত্যা করল| কেবল ঠাট্টা করতে পশুদের আঘাত করল| 7 তাদের রাগ এক অভিশাপ| কারণ তা প্রচণ্ড| উন্মত্ত হয়ে উঠলে তারা নিষ্ঠুরতায পূর্ণ হয়| তারা যাকোবের দেশে তাদের অংশ পাবে না| তারা সমস্ত ইস্রাযেলে ছড়িয়ে পড়বে|” 8 “যিহূদা তোমার ভাইরা তোমার প্রশংসা করবে| তুমি তোমার শত্রুদের পরাজিত করবে| তোমার ভাইরা তোমার কাছে জানু পাতবে| 9 আমার বাছা, তুমি শিকারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সিংহের মতো| সে বিশ্রাম করলে তাকে বিরক্ত করার সাহস কার আছে| 10 যিহূদার বংশ থেকেই রাজারা উঠবে| তার বংশ য়ে শাসন করবে এই চিহ্ন প্রকৃত রাজা না আসা পর্য্ন্ত রইবে| পরে বহু লোক বাধ্য হয়ে তার সেবা করবে| 11 সে দ্রাক্ষালতা দিয়ে তার গাধা বাঁধবে| গাধার শাবককে উত্তম দ্রাক্ষালতায় বাঁধবে| উত্তম দ্রাক্ষারসে নিজের বস্ত্র ধৌত করবে| 12 তার চোখ দ্রাক্ষারস পান করে লাল, তার দাঁত দুধ পান করে সাদা|” 13 “সবূলূন সমুদ্রের কাছে বাস করবে| তার সমুদ্রোপকুল জাহাজের পক্ষে হবে নিরাপদ| সীদোন পর্য্ন্ত বিস্তৃত হবে তার দেশ|” 14 “ইষাখর খচ্চরের মত কঠিন পরিশ্রম করেছে| ভারী বোঝা বহন করার পর সে বিশ্রাম করবে| 15 সে দেখবে তার বিশ্রাম স্থান উত্তম| তার দেশ হবে মনোহর| তখন সে ভারী বোঝা বইতে সম্মত হবে| দান হিসাবে কাজ করতে সম্মতি জানাবে|” 16 “দান ইস্রায়েলের অন্য বংশের মতোই নিজের প্রজাদের বিচার করবে| 17 দান হবে পথের ধারের সাপের মতো| সে পথে শুয়ে থাকা বিষধর সাপের মতই হবে| সেই সাপ, য়ে ঘোড়ার পাযে দংশন করে চালককে মাটিতে ফেলে দেয| 18 হে প্রভু, আমি তোমার পরিত্রাণের অপেক্ষা করছি|” 19 “এক দল দস্যু গাদকে আক্রমণ করবে| কিন্তু গাদ তাদের পিছনে তাড়া করবে|” 20 “আশেরের দেশে উত্তম খাদ্য উত্পন্ন হবে| রাজার উপযুক্ত খাদ্যই সে য়োগাবে!” 21 “নপ্তালি মুক্ত হরিণীর মতো, আর তার বাক্য তাদের সুন্দর শিশুর মতো|” 22 “য়োষেফ কৃতকার্য়্য় হয়েছে| সে ফলে ঢাকা লতার মতো| বসন্তে বেড়ে ওঠা শাখার মতো| বেড়ার গায়ে বেড়ে ওঠা লতার মতো| 23 অনেক লোক তার বিরুদ্ধে গেছে এবং তার সঙ্গে যুদ্ধ করেছে| ধনুকধারীরা তার শত্রু হয়েছে| 24 কিন্তু সে তার পরাক্রমী ধনু ও দক্ষ বাহুর সাহায়্য়ে যুদ্ধ জয় করেছে| সে ক্ষমতা পায় যাকোবের এক বীরের কাছ থেকে, এক মেষপালকের কাছ থেকে য়ে ইস্রায়েলের পর্বত স্বরূপ, মেষপালক অর্থাত্ ইস্রায়েলের শৈলের কাছে| 25 তোমার পিতার ঈশ্বরের কাছ থেকে ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করুন| সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করুন, উপরের আকাশ হতে আশীর্বাদ বর্ষান, আর গভীর জল থেকেও আশীর্বাদ করুন| তিনি তোমাকে স্তন ও গর্ভ হতেও আশীর্বাদ করুন| 26 আমার পূর্বপুরুষরা অনেক আশীর্বাদ ভোগ করেছেন| কিন্তু তোমার পিতা আমি আরও বেশী আশীর্বাদ পেয়েছি| তোমার ভাইরা তোমায় সব থেকে বঞ্চিত করল; কিন্তু এখন আমি পর্বতের সমান উঁচু আশীর্বাদ তোমার মাথায় রাশিকৃত করলাম|” 27 “বিন্যামীন ক্ষুধার্ত নেকড়ে| সকালে সে শিকার করে খেতে হবে| বিকালে যা পড়ে থাকে তা ভাগ করে নেয়|” 28 এই হল ইস্রায়েলের বারো বংশ| আর এই কথাগুলো তাদের পিতা তাদের বলেছিলেন| তিনি প্রত্যেকটি সন্তানকে তাদের উপযুক্ত আশীর্বাদে আশীর্বাদ করলেন| 29 তারপর ইস্রায়েল তাদের এই নির্দেশ দিয়ে বললেন, “মৃত্যুর পর আমি চাই আমার লোকদের সঙ্গে পুনর্মিলিত হতে, সুতরাং হেতীয ইফ্রোণের ক্ষেতে য়ে গুহা আছে সেখানে আমার পিতৃপুরুষদের সেই গুহায় আমায় কবর দিও| 30 সেই কবর কনান দেশে মম্রির কাছে মক্পেলা থেকে কিনেছিলেন য়েন কবর দিতে পারেন| 31 অব্রাহাম ও তার স্ত্রী সারাও সেই কবরে সমাহিত হয়েছিলেন| ইসহাক ও তার স্ত্রী রিবিকাকেও সেই কবরে সমাহিত করা হয়েছিল| আমি আমার স্ত্রী লেয়াকেও সেখানে সমাহিত করেছি| 32 সেই গুহা হেতীয়দের কাছ থেকে কেনা সেই ক্ষেতের মধ্যে রয়েছে|” 33 যাকোব তার পুত্রদের সঙ্গে কথা বলা শেষ করে শুয়ে পড়লেন| বিছানায পা উঠিযে রাখলেন, তারপর মারা গেলেন|
1 ইস্রায়েল মারা গেলে য়োষেফ অত্যন্ত দুঃখিত হলেন| তিনি কাঁদলেন এবং তাঁর পিতাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন| 2 য়োষেফ তাঁর ভৃত্যদের পিতার দেহ প্রস্তুত করতে বললেন| (এই ভৃত্যরা চিকিত্সক ছিল|) চিকিত্সকেরা মিশরীযরা য়ে বিশেষভাবে দেহ প্রস্তুত করে সেইভাবে যাকোবের দেহ কবর দেবার জন্য প্রস্তুত করল| 3 দেহ বিশেষভাবে প্রস্তুত করার সময় কবর দেবার আগে তারা 40 দিন পর্য্ন্ত অপেক্ষা করল| তারপর 70 দিন ধরে মিশরীযরা যাকোবের জন্য শোক পালন করল| 4 শোকের 70 দিন শেষ হলে য়োষেফ ফরৌণের আধিকারিকদের বললেন, 5 “ফরৌণকে দয়া করে এই কথা বলুন: “আমার পিতা যখন মৃত্যুশয়্য়ায ছিলেন তখন আমি তাঁর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম য়ে তাঁকে কনান দেশে এক গুহায সমাহিত করব| এই গুহা তিনি নিজের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন| তাই দয়া করে আমার পিতাকে কবর দিতে দিন| তারপর আমি আবার আপনার কাছে আসব|” 6 ফরৌণ বললেন, “তোমার প্রতিজ্ঞা পালন কর| যাও তোমার পিতাকে কবর দাও|” 7 তাই য়োষেফ তাঁর পিতাকে সমাহিত করতে চললেন| ফরৌণের সমস্ত আধিকারিক, ফরৌণের নেতারা এবং মিশরের প্রবীণরা য়োষেফের সাথে গেলেন| 8 য়োষেফের পরিবারের সবাই, তাঁর ভাইরা ও তাঁর পিতার পরিবারের সবাই, তাঁর সঙ্গে গেলেন| গোশন প্রদেশে কেবল তাদের সন্তানসন্ততি ও পশুরা থেকে গেল| 9 সেই এক বিরাট দল হল এমনকি এক দল সৈনিকও রথে ও ঘোড়ায় চড়ে চলল| 10 তারা যর্দন নদীর পূর্বদিকে গোরেন আটদেরখামারে এলেন| এই স্থানে তারা ইস্রায়েলের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে শোক সভা করলেন| সেই শোক সভা সাত দিন ধরে চলল| 11 কনান দেশের লোকরা গোরেন আটদের সেই অন্ত্যোষ্টি ক্রিয়া দেখে বললেন, “মিশরীয়দের এ দারুণ বিষাদময় শোকের অনুষ্ঠান!” সেইজন্য য়র্দ্দন নদীর পারের সেই জায়গার নাম হল আবেল্-মিস্রযীম| 12 সুতরাং যাকোবের পুত্ররা তাদের পিতার কথানুসারে কাজ করলেন| 13 তারা তাঁর দেহ কনান দেশে বহন করে এনে মক্পেলার গুহাতে কবর দিল| অব্রাহাম হেতীয় ইক্রোণের কাছ থেকে মম্রির কাছে য়ে ক্ষেত কিনেছিলেন এই কবর সেখানেই ছিল| অব্রাহাম কবর দেবার জন্যই এটা কিনেছিলেন| 14 য়োষেফ তাঁর পিতাকে কবর দেবার পর তাঁর দলের সবাই মিশরে ফিরে গেলেন| 15 যাকোব মারা গেলে য়োষেফের ভাইরা দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হল| তারা এই ভেবে ভীত হল য়ে বহু বছর আগে তারা য়োষেফের প্রতি যা করেছিল, য়োষেফ হয়তো তার প্রতিফল দেবেন| তারা বলল, “হয়তো য়োষেফ এখনও আমরা যা করেছিলাম তার জন্য ঘৃণা করেন|” 16 এইজন্য ভাইরা য়োষেফকে এই বলে পাঠাল: পিতা মারা যাবার আগে আপনাকে এই বার্তা দিতে বলেছিলাম| 17 তিনি বললেন, ‘য়োষেফকে আমার এই অনুরোধ, সে য়েন দয়া করে তার ভাইদের অন্যায় কাজ ক্ষমা করে দেয|’ সেই জন্য আমরা এখন আমাদের তোমার প্রতি করা সেই অন্যায় কাজের ক্ষমা চাই| আমরা সেই ঈশ্বরের দাস যিনি তোমার পিতারও ঈশ্বর|এই খবরে য়োষেফ খুব দুঃখ পেলেন এবং কাঁদলেন| 18 তাঁর ভাইরা তাঁর সামনে গিয়ে প্রণাম করলেন এবং বললেন, “আমরা আপনার দাস হব|” 19 তখন য়োষেফ তাদের বললেন, “ভয় কর না, আমি ঈশ্বর নই!” শাস্তি দেবার অধিকার আমার নেই| 20 এটা সত্যি য়ে তোমরা আমার প্রতি অনিষ্ট করার পরিকল্পনা করেছিলে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরই আমার জন্য ভাল কিছু পরিকল্পনা করছিলেন| ঈশ্বরের আমার মাধ্যমে অনেকের প্রাণ বাঁচানোর পরিকল্পনা ছিল| 21 আর ঘটল ও তা-ই| তাই ভয় পেও না| আমি তোমাদের এবং তোমাদের সন্তানদের সহায় হব|” এইভাবে য়োষেফ ভাইদের ভালো ভালো কথা বললে তারা ভালো বোধ করল| 22 য়োষেফ তাঁর পিতার পরিবারের সঙ্গে মিশরে রইলেন| য়োষেফ 110 বছর বয়সে মারা গেলেন| 23 য়োষেফের জীবনকালেই য়োষেফ এও দেখলেন য়ে তাঁর পুত্র মনঃশির মাখীর নামে একটি পুত্র হল| য়োষেফের জীবনকালেই মাখীরের পুত্ররা জন্মাল এবং য়োষেফ তাও দেখে য়েতে পারলেন| 24 অন্তিম শয়্য়ায য়োষেফ তাঁর ভাইদের বললেন, “আমার মৃত্যুর সময় নিকট, কিন্তু আমি জানি ঈশ্বর তোমাদের যত্ন নেবেন এবং এই দেশ থেকে বের করে নিয়ে যাবেন সেই দেশে, য়ে দেশ তিনি অব্রাহাম ইসহাক ও যাকোবকে দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন|” 25 তারপর য়োষেফ তাঁর লোকদের একটি শপথ নিতে বললেন য়ে ঈশ্বর তাদের যখন নতুন দেশে নিয়ে যাবেন, তখন তারা য়েন তাঁর অস্থি বহন করে নিয়ে যায়| 26 য়োষেফ 110 বছর বয়সে মিশরে মারা যান| চিকিত্সকরা তাঁর দেহে ঔষধ দিয়ে মিশরে এক কফিনের মধ্যে রাখলেন|
1 যাকোব তাঁর পুত্রদের নিয়ে মিশরের পথে চললেন| পুত্রদের সঙ্গে তাদের নিজ নিজ পরিবারও ছিল| ইস্রায়েলের পুত্ররা হল: 2 রূবেণ, শিমিযোন, লেবি, যিহূদা 3 ইষাখর, সবূলূন, বিন্যামীন, 4 দান, নপ্তালি, গাদ এবং আশের| 5 যাকোবের সবশুদ্ধ 70 জন উত্তরপুরুষ ছিল| য়োষেফ তাঁর বারোজন পুত্রের একজন, কিন্তু সে আগে থেকে মিশরে ছিল| 6 পরে য়োষেফ তাঁর ভাইরা এবং ঐ প্রজন্মের প্রত্যেকেই মারা গেলেও 7 ইস্রায়েলের লোকদের অসংখ্য সন্তান ছিল| তাদের লোকসংখ্যা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে গিয়েছিল| ফলস্বরূপ মিশর দেশটি ইস্রায়েলীয়তে ভরে গিয়েছিল| 8 সেই সময় একজন নতুন রাজা মিশর শাসন করতে লাগলেন| এই রাজা য়োষেফকে চিনতেন না| 9 রাজা তাঁর প্রজাদের উদ্দেশ্যে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকদের দিকে চেযে দেখ, ওরা সংখ্যায় অসংখ্য এবং আমাদের থেকে বেশী শক্তিশালী! 10 তাদের শক্তিবৃদ্ধি বন্ধ করবার জন্য আমাদের কিছু একটা চতুরতার সাহায্য নিতেই হবে| কারণ, এখন যদি যুদ্ধ লাগে তাহলে ওরা আমাদের পরাজিত করবার জন্য ও আমাদের দেশ থেকে বের করে দেবার জন্য আমাদের শত্রুদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে|” 11 মিশরের লোকরা তাই ইস্রায়েলের লোকদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলার ফন্দি আঁটল| অতএব ইস্রায়েলীয়দের তত্ত্বাবধান করবার জন্য মিশরীয়রা ক্রীতদাস মনিবদের নিয়োগ করল| এই দাস শাসকরা ইহুদীদের দিয়ে জোর করে রাজার জন্য পিথোম ও রামিষেষ নামে দুটি শহর নির্মাণ করাল| এই দুই শহরে রাজা শস্য এবং অন্যান্য জিনিসপত্র মজুত করে রাখলেন| 12 মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল| কিন্তু তাদের যত বেশী কঠিন পরিশ্রম করানো হতে থাকল ততই ইস্রায়েলের লোকদের সংখ্যাবৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটতে থাকল| ফলে মিশরীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের আরও বেশী ভয় পেতে শুরু করল| 13 আর সেইজন্য তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি আরও বেশী নির্দয হয়ে উঠল| ফলস্বরূপ মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের আরো কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল| 14 মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের জীবন দুর্বিসহ করে তুলল| তারা ইস্রায়েলীয়দের ইঁট তৈরি করবার জন্য গাদা গাদা ভারী ঢালাই এর মিশ্রণ বহন করতে এবং মাঠে লাঙল চালাতে বাধ্য করেছিল| তারা ইস্রায়েলীয়দের সব রকমের কঠিন কাজ করতে বাধ্য করেছিল| 15 ইস্রায়েলীয় মহিলাদের সন্তান প্রসবে সাহায্য করবার জন্য দুজন ধাইমা ছিল| তাদের দুজনের নাম ছিল শিফ্রা ও পূযা| 16 বয়ং রাজা এসে সেই দুই ধাইমাকে বললেন, “দেখছি তোমরা বরাবর হিব্রু মহিলাদের সন্তান প্রসবের সময় সাহায্য করে চলেছে| দেখ, যদি কেউ কন্যা সন্তান প্রসব করে তাহলে ঠিক আছে, তাকে বাঁচিয়ে রেখ, কিন্তু পুত্র সন্তান হলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে হত্যা করবে|” 17 কিন্তু ধাইমা দুজন ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখে রাজার আদেশ অমান্য করে পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখল| 18 রাজা এবার তাদের ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “তোমরা এটা কি করলে? কেন তোমরা আমার অবাধ্য হয়েছ এবং পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রেখেছ?” 19 ধাইমারা রাজাকে বলল, “হে রাজা, ইস্রায়েলীয় মহিলারা মিশরের মহিলাদের থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী| আমরা তাদের সাহায্যের জন্য পৌঁছাবার আগেই ইস্রায়েলীয় মহিলারা সন্তান প্রসব করে ফেলে|” 20 ঈশ্বর ঐ ধাইমাদের এই আচরণে খুশী হলেন| তাই ঈশ্বর ধাইমাদের আশীর্বাদ করলেন এবং তাদের নিজেদের পরিবার বানাতে দিলেন| ইস্রায়েলীয়রা সংখ্যায় আরও বাড়তে থাকল এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল| 21 22 পরে ফরৌণ নিজস্ব লোকদের আদেশ দিলেন, “তোমরা কন্যা সন্তান বাঁচিয়ে রাখতে পারো| কিন্তু পুত্র সন্তান হলে তাকে নীলনদে ছুঁড়ে ফেলতে হবে|”
1 লেবি পরিবারের একজন পুরুষ লেবি পরিবারেরই এক কন্যাকে বিয়ে করেছিল| 2 সে সন্তানসম্ভবা হল এবং একটা সুন্দর ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| পুত্র সন্তান দেখতে এত সুন্দর হয়েছিল য়ে তার মা তাকে তিন মাস লুকিয়ে রেখেছিল| 3 তিন মাস পরে যখন সে তাকে আর লুকিয়ে রাখতে পারছিল না, তখন সে একটি ঝুড়িতে আলকাতরা মাখালো এবং তাতে শিশুটিকে রেখে নদীর তীরে লম্বা ঘাসবনে রেখে এলো| 4 শিশুটির বড় বোন তার ভাইয়ের কি অবস্থা হতে পারে দেখবার জন্য দূরে দাঁড়িয়ে ভাইয়ের ঝুড়ির দিকে লক্ষ্য রাখছিল| 5 ঠিক তখনই ফরৌণের মেয়ে নদীতে স্নান করতে এসেছিল| সে দেখতে পেল ঘাসবনে একটি ঝুড়ি ভাসছে| তার সহচরীরা তখন নদী তীরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল| তাই সে তার সহচরীদের একজনকে ঝুড়িটা তুলে আনতে বলল| 6 তারপর রাজকন্যা ঝুড়িটা খুলে দেখল য়ে তাতে রযেছে একটি শিশুপুত্র| শিশুটি তখন কাঁদছিল| আর তা দেখে রাজকন্যার বড় দযা হল| ভাল করে শিশুটিকে লক্ষ্য করার পর সে বুঝতে পারল য়ে শিশুটি হিব্রু| 7 এবার শিশুটির দিদি আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে রাজকন্যাকে বলল, “আমি কি আপনাকে সাহায্যের জন্য কোনও হিব্রু যাত্রীকে ডেকে আনব য়ে অন্তত শিশুটিকে দুধ খাওয়াতে পারবে?” 8 রাজকন্যা বলল, “বেশ যাও|”সুতরাং মেয়েটি গেল এবং শিশুটির মাকে ডেকে আনল| 9 রাজকন্যা তাকে বলল, “আমার হয়ে তুমি এই শিশুটিকে দুধ পান করাও| এরজন্য আমি তোমাকে টাকা দেব|” তারই মা শিশুটিকে য়ত্ন করে বড় করে তুলতে লাগল| 10 শিশুটি বড় হয়ে উঠলে মহিলাটি তার সন্তানকে রাজকন্যাকে দিয়ে দিল| রাজকন্যা শিশুটিকে নিজের ছেলের মতোই গ্রহণ করে তার নাম দিল মোশি| শিশুটিকে সে জল থেকে পেয়েছিল বলে তার নামকরণ করা হল মোশি| 11 একদিন, মোশি বড় হয়ে যাবার পর সে তার নিজের লোকদের দেখবার জন্য বাইরে গেল এবং দেখল তাদের ভীষণ কঠিন কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে| সে এও দেখল য়ে একজন মিশরীয় একজন হিব্রু ছোকরাকে প্রচণ্ড মারধর করছে| 12 মোশি চারিদিকে তাকিয়ে দেখল কেউ ব্যাপারটা লক্ষ্য করছে না| তখন মোশি সেই মিশরীয়কে হত্যা করে তাকে বালিতে পুঁতে দিল| 13 পরদিন মোশি দেখল দুজন ইস্রায়েলীয় নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে| তাদের মধ্যে একজন অন্যাযভাবে আরেকজনকে মারছে| মোশি তখন সেই অন্যাযকারী লোকটির উদ্দেশ্যে বলল, “কেন তুমি তোমার প্রতিবেশীকে মারছো?” 14 লোকটি উত্তরে জানাল, “তোমাকে কে আমাদের শাস্তি দিতে পাঠিয়েছে? বলো, তুমি কি আমাকে মারতে এসেছ য়েমনভাবে তুমি গতকাল ঐ মিশরীয়কে হত্যা করেছিলে?”তখন মোশি ভয় পেয়ে মনে মনে বলল, “তাহলে এখন ব্যাপারটা সবাই জেনে গেছে|” 15 একদিন রাজা ফরৌণ মোশির কীর্তি জানতে পারলেন; তিনি তাকে হত্যা করতে চাইলেন| কিন্তু মোশি মিদিযন দেশে পালিয়ে গেল|মিদিয়নে এসে একটি কুয়োর সামনে মোশি বসে পড়ল| 16 সেখানে এক যাজক ছিল| তার ছিল সাতটি মেয়ে| কুযো থেকে জল তুলে পিতার পোষা মেষপালকে জল খাওয়ানোর জন্য সেই সাতটি মেয়ে কুযোর কাছে এল| তারা মেষদের জল পানের পাত্রটি ভর্তি করার চেষ্টা করছিল| 17 কিন্তু কিছু মেষপালক এসেছিল এবং তরুণীদের তাড়িয়ে দিয়েছিল| তাই মোশি তাদের সাহায্য করতে এলো এবং তাদের পশুর পালকে জল পান করালো| 18 তখন তরুণীরা তাদের পিতা রূয়েলের কাছে ফিরে গেল| সে বলল, “তোমরা আজ তাড়াতাড়ি ফিরে এসেছ দেখছি!” 19 তরুণীরা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, ওখানে কুযো থেকে জল তোলার সময় কিছু মেষপালক আমাদের তাড়িয়ে দিল| কিন্তু একজন অচেনা মিশরীয় এলো এবং আমাদের সাহায্য করল| সে আমাদের জন্য জলও তুলে দিল এবং আমাদের মেষের পালকে জল পান করালো|” 20 রূযেল তার মেয়েদের বলল, “সেই লোকটি কোথায? তোমরা তাকে ওখানে ছেড়ে এলে কেন? যাও তাকে আমাদের সঙ্গে খাবার নেমতন্ন করে এসো|” 21 মোশি রূযেলের সঙ্গে থাকবার জন্য খুশীর সঙ্গে রাজী হল| রূযেল তার মেয়ে সিপ্পোরার সঙ্গে মোশির বিয়ে দিল| 22 বিয়ের পর সিপ্পোরা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| মোশি তার নাম দিল গের্শোম কারণ সে ছিল প্রবাসে থাকা একজন অপরিচিত ব্যক্তি| 23 দেখতে দেখতে অনেক বছর পেরিযে গেল| মিশরের রাজাও ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন| কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের তখনও জোর করে কাজ করানো হচ্ছিল| তারা সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি শুরু করল| এবং সেই কান্না বয়ং ঈশ্বর শুনতে পাচ্ছিলেন| 24 ঈশ্বর তাদের গভীর আর্তনাদ শুনলেন এবং তিনি স্মরণ করলেন সেই চুক্তির কথা যা তিনি অব্রাহাম, ইস্হাক এবং যাকোবের সঙ্গে করেছিলেন| 25 ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের দেখেছিলেন এবং তিনি জানতেন তিনি কি করতে যাচ্ছেন এবং তিনি স্থির করলেন য়ে শীঘ্রই তিনি তাঁর সাহায্যের হাত তাদের দিকে বাড়িযে দেবেন|
1 রূযেল ছাড়াও মোশির শ্বশুরের আর এক নাম ছিল য়িথ্রো| য়িথ্রো মিদিযনীর একজন যাজক| মোশি য়িথ্রোর মেষের পালের দেখাশোনার দায়িত্ব নিল| মোশি মেষের পাল চরাতে মরুভূমির পশ্চিম প্রান্তে য়েত| একদিন সে মেষের পাল চরাতে চরাতে ঈশ্বরের পর্বত হোরেবে (সিনয়) গিয়ে উপস্থিত হল| 2 ঐ পর্বতে সে জ্বলন্ত ঝোপের ভিতরে প্রভুর দূতের দর্শন পেল| মোশি দেখল ঝোপে আগুন লাগলেও তা পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে না| 3 তাই সে অবাক হয়ে জ্বলন্ত ঝোপের আর একটু কাছে এগিয়ে গেল| মনে মনে ভাবল কি আশ্চর্য় ব্যাপার, ঝোপে আগুন লেগেছে, অথচ ঝোপটা পুড়ে নষ্ট হচ্ছে না! 4 প্রভু লক্ষ্য করছিলেন মোশি ক্রমশঃ ঝোপের দিকে দৃষ্টিপাত করতে করতে কাছে এগিয়ে আসছে| তাই ঈশ্বর ঐ ঝোপের ভিতর থেকে ডাকলেন, “মোশি, মোশি!”এবং মোশি উত্তর দিল, “হ্যাঁ, প্রভু|” 5 তখন প্রভু বললেন, “আর কাছে এসো না| পায়ের চটি খুলে নাও| তুমি এখন পবিত্র ভূমিতে দাঁড়িয়ে আছো| 6 আমি তোমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর| আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর|”মোশি ঈশ্বরের দিকে তাকানোর ভয়ে তার মুখ ঢেকে ফেলল| 7 তখন প্রভু বললেন, “মিশরে আমার লোকদের দুর্দশা আমি নিজের চোখে দেখেছি| এবং যখন তাদের ওপর অত্যাচার করা হয় তখন আমি তাদের চিত্কার শুনেছি| আমি তাদের যন্ত্রণার কথা জানি| 8 এখন সমতলে নেমে গিয়ে মিশরীয়দের হাত থেকে আমার লোকদের আমি রক্ষা করব| আমি তাদের মিশর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাব এবং আমি তাদের এমন এক সুন্দর দেশে নিয়ে যাব য়ে দেশে তারা স্বাধীনভাবে শান্তিতে বাস করতে পারবে| সেই দেশ হবে বহু ভাল জিনিসে ভরা ভূখণ্ড|নানা ধরণের মানুষ সে দেশে বাস করে: কনানীয, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও য়িবুষীয গোষ্ঠীর লোকরা সেখানে বাস করে| 9 আমি ইস্রায়েলীয়দের কান্না শুনেছি| দেখেছি, মিশরীয়রা কিভাবে তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে| 10 তাই এখন আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে পাঠাচ্ছি| যাও! তুমি আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বাইরে নিয়ে এসো|” 11 কিন্তু মোশি ঈশ্বরকে বলল, “আমি কোনও মহান ব্যক্তি নই! সুতরাং আমি কি করে ফরৌণের কাছে যাব এবং ইহুদীদের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনব?” 12 ঈশ্বর বললেন, “তুমি পারবে, কারণ আমি তোমার সঙ্গে থাকব! আমি য়ে তোমাকে পাঠাচ্ছি তার প্রমাণ হবে; তুমি ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনার পর এই পর্বতে এসে আমার উপাসনা করবে|” 13 তখন মোশি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলল, ‘কিন্তু আমি যদি গিয়ে ইস্রায়েলীয়দের বলি য়ে, “তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন,’ তখন তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তার নাম কি?’ তখন আমি তাদের কি বলব?” 14 তখন ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “তাদের বলো, ‘আমি আমিই|’ যখনই তুমি ইস্রায়েলীয়দের কাছে যাবে তখনই তাদের বলবে, ‘আমিই’ আমাকে পাঠিয়েছেন|” 15 ঈশ্বর মোশিকে আরও বললেন, “তুমি অবশ্যই তাদের একথা বলবে: ‘য়িহোবা হলেন তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর| আমার নাম সর্বদা হবে য়িহোবা| এই নামেই আমাকে লোকে বংশ পরম্পরায চিনবে|’ লোকদের বলো, ‘য়িহোবা তোমাকে পাঠিয়েছেন!”‘ 16 প্রভু আরও বললেন, “যাও, ইস্রায়েলের প্রবীণদের একত্র করে তাদের বলো, ‘য়িহোবা, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আমাকে দর্শন দিয়েছেন| অব্রাহামের, ইস্হাকের, এবং যাকোবের ঈশ্বর আমাকে বলেছেন: তোমাদের সঙ্গে মিশরে যা ঘটছে তা সবই আমি দেখেছি| 17 আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি য়ে মিশরের দুর্দশা থেকে তোমাদের উদ্ধার করব| আমি তোমাদের উদ্ধার করব এবং তোমাদের কনানীয, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের দেশে নিয়ে যাব| আমি তোমাদের বহু সুসম্পদে ভরা ভূখণ্ডে নিয়ে যাব|’ 18 “প্রবীণরা তোমার কথা শুনবে এবং তখন তুমি প্রবীণদের নিয়ে মিশরের রাজার কাছে যাবে| তুমি অবশ্যই যাবে এবং রাজাকে বলবে য়ে য়িহোবা, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর আমাদের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন| এখন আমাদের তিনদিন ধরে মরুভূমিতে ভ্রমণ করতে দাও| সেখানে আমরা য়িহোবা, আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ দান করব|” 19 “কিন্তু আমি জানি য়ে মিশরের রাজা তোমাদের সেখানে য়েতে দেবে না| কেবলমাত্র একটি মহান শক্তিই তাকে বাধ্য করতে পারে তোমাদের যাবার অনুমতি দেবার জন্য| 20 তাই আমি আমার বিরাট ক্ষমতা দিয়ে মিশরীয়দের আঘাত করব| আমি ঐ দেশে আশ্চর্য় সব কাণ্ড ঘটাব| আমার ঐসব অদ্ভুত কাণ্ড ঘটানোর পরেই দেখবে য়ে সে তোমাদের য়েতে দিচ্ছে| 21 এবং আমি ইস্রায়েলীয়দের প্রতি মিশরীয়দের দযালু করে তুলব| ফলে তোমরা যখন মিশর ত্যাগ করবে তখন মিশরীয়রা তোমাদের হাত উপহারে ভরে দেবে| 22 প্রত্যেক ইস্রায়েলীয় মহিলা নিজের নিজের মিশরীয় প্রতিবেশীর বাড়ী যাবে এবং মিশরীয় মহিলার কাছে গিয়ে উপহার চাইবে| এবং মিশরীয় মহিলারা তাদের উপহার দেবে| তোমার লোকরা উপহার হিসাবে সোনা, রূপা এবং মিহি ও মসৃণ পোশাক পাবে| তারপর যখন তোমরা মিশর ত্যাগ করবে তখন সেই উপহারগুলি নিজের নিজের ছেলেমেয়েদের গায়ে পরিযে দেবে| এইভাবে তোমরা মিশরীয়দের সম্পদ নিয়ে আসতে পারবে|”
1 তখন মোশি ঈশ্বরকে বললেন, “কিন্তু আপনি আমাকে পাঠিয়েছেন বললেও ইস্রায়েলের লোকরা তা বিশ্বাস করতে চাইবে না| বরং তারা উল্টে বলবে, ‘প্রভু তোমাকে দর্শন দেন নি|”‘ 2 কিন্তু প্রভু মোশিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার হাতে ওটা কি?”মোশি উত্তর দিল, “এটা আমার পথ চলার লাঠি|” 3 তখন প্রভু বললেন, “ঐ লাঠিকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেল|”প্রভুর কথামতো মোশি তার হাতের পথ চলার লাঠিকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলতেই ঐ লাঠি তত্ক্ষনাত্ সাপে পরিণত হল| মোশি তা দেখে ভয়ে পালাতে যাচ্ছে দেখে 4 প্রভু মোশিকে বললেন: “যাও কাছে গিয়ে সাপটিকে লেজের দিক থেকে ধরো|”সুতরাং মোশি সাপটির লেজ ধরে ঝোলাতেই দেখল সাপটি আবার লাঠিতে পরিণত হল| 5 তখন প্রভু বললেন, “লাঠি দিয়ে এই চমত্কারিত্ব দেখলেই লোকরা বিশ্বাস করবে য়ে তুমি প্রভু, তোমার পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের দেখা পেয়েছ| দেখা পেয়েছ অব্রাহাম, ইসহাক এবং যাকোবের ঈশ্বরের|” 6 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, “আমি তোমাকে আরও একটি প্রমাণ দেব| আলখাল্লার নীচে হাত রাখো|”তাই মোশি আলখাল্লা খুলে হাত ভেতরে রাখলো| তারপর সে তার হাত বের করে দেখল হাতটি শ্বেতীতে ভরে গেছে| 7 তখন প্রভু বললেন, “এবার আবার আলখাল্লার ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দাও|” তাই মোশি আবার তার হাত আলখাল্লার ভেতরে ঢুকিয়ে দিল এবং তা বের করে আনার পর মোশি দেখল তার হাত আবার আগের মতোই স্বাভাবিক সুন্দর হয়ে গেছে| 8 তারপর প্রভু বললেন, “যদি লোকরা লাঠিকে সাপ বানানোর কীর্তি দেখার পরও তোমাকে বিশ্বাস না করে তাহলে হাতের ব্যাপারটি দেখাবে| তখন তোমাকে তারা বিশ্বাস করবে| 9 যদি এই দুটো প্রমাণ দেখানোর পরও লোকরা তোমাকে বিশ্বাস না করে তাহলে নীলনদ থেকে সামান্য জল নেবে| সেই জল মাটিতে ঢালবে এবং জল মাটিকে স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে তা রক্তে পরিণত হবে|” 10 তখন মোশি প্রভুর উদ্দেশ্যে বললেন, “কিন্তু প্রভু আমি তো একজন চতুর বক্তা নই| আমি কোনোকালেই সাজিযে গুছিযে কথা বলতে পারি না| এবং এখনও আপনার সঙ্গে কথা বলার পরেও আমি সুবক্তা হতে পারি নি| আপনি জানেন য়ে আমি ধীরে ধীরে কথা বলি এবং কথা বলার সময় ভাল ভাল শব্দ চযন করতে পারি না|” 11 তখন প্রভু তাকে বললেন, “মানুষের মুখ কে সৃষ্টি করেছে? এবং কে একজন মানুষকে বোবা ও কালা তৈরী করে? কে মানুষকে অন্ধ তৈরী করে? কে মানুষকে দৃষ্টিশক্তি দেয়? আমি যিহোবা| আমিই একমাত্র এইসব করতে পারি| 12 সুতরাং যাও| যখন তুমি কথা বলবে তখন আমি তোমায় কথা বলতে সাহায্য করব| আমিই তোমার মুখে শব্দ জোগাব|” 13 তবু মোশি বলল, “হে আমার প্রভু, আমার একটাই অনুরোধ, আপনি এই কাজের জন্য অন্য একজনকে মনোনীত করুন, আমাকে নয়|” 14 মোশির প্রতি প্রভু তখন ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, “বেশ! তাহলে তোমাকে সাহায্য করার জন্য আমি তোমার ভাই হারোণকে তোমার সঙ্গে দিচ্ছি| হারোণ লেবীয় পরিবারের সন্তান এবং সে বেশ ভাল বক্তা| হারোণ ইতিমধ্যেই তোমার সঙ্গে দেখা করার জন্য আসছে| এবং সে তোমাকে দেখে খুশীই হবে| 15 হারোণ তোমার সঙ্গে ফরৌণের কাছে যাবে| তোমাদের কি বলতে হবে তা আমি বলে দেব| কি করতে হবে তা আমি তোমাদের শিখিযে দেব এবং তুমি তা হারোণকে বলে দেবে| 16 তোমার হয়ে হারোণ লোকদের সঙ্গে কথা বলবে| তুমি হবে তার কাছে ঈশ্বরের মতো| আর হারোণ হবে তোমার মুখপাত্র| 17 সুতরাং যাও এবং সঙ্গে তোমার পথ চলার লাঠি নাও| আমি য়ে তোমার সঙ্গে আছি তা প্রমাণ করার জন্য লোকদের এই চিহ্ন-কার্য়্য়গুলি দেখাও|” 18 মোশি তখন তার শ্বশুর যিথ্রোর কাছে ফিরে গেল| মোশি তার শ্বশুরকে বলল, “অনুগ্রহ করে আমাকে মিশরে ফিরে য়েতে দিন| আমি দেখতে চাই আমার লোকরা এখনও সেখানে বেঁচে আছি কিনা|”যিথ্রো তার জামাতা মোশিকে বলল, “নিশ্চয়ই! আশা করি তুমি সেখানে ভালোভাবেই পৌঁছাবে|” 19 মিদিয়নে থাকাকালীন প্রভু মোশিকে বললেন, “মিশরে ফিরে যাওয়া এখন তোমার পক্ষে ভাল| কারণ যারা তোমায় হত্যা করতে চেযেছিল তারা এখন কেউ বেঁচে নেই|” 20 সুতরাং মোশি তখন তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের গাধার পিঠে চাপিয়ে মিশরে প্রত্যাবর্তন করল| সঙ্গে সে তার পথ চলার লাঠিও নিল| এটা সেই পথ চলার লাঠি যাতে রযেছে ঈশ্বরের অলৌকিক শক্তি| 21 মিশরে আসার পথে প্রভু মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন| তিনি বলেছিলেন, “আমি তোমাকে অলৌকিক কাজ দেখানোর য়ে সব শক্তি দিয়েছি সেগুলো সব ফরৌণের সঙ্গে কথা বলার সময় তার সামনে করে দেখাবে| কিন্তু আমি ফরৌণকে একগুঁয়ে এবং জেদী করে তুলব| সে লোকদের কিছুতেই ছেড়ে দেবে না| 22 তখন তুমি ফরৌণকে বলবে: 23 প্রভু বলেছেন, ‘ইস্রায়েল হল আমার প্রথমজাত পুত্র সন্তান| এই প্রথমজাত সন্তান একটি পরিবারে জন্মেছিল| অতীত দিনে এই প্রথমজাত সন্তানের গুরুত্ব ছিল অসীম| এবং আমি তোমাকে বলছি আমার পুত্রকে আমার উপাসনার জন্য ছেড়ে দাও| তুমি যদি ইস্রায়েলকে ছেড়ে দিতে অস্বীকার করো তাহলে আমি তোমার প্রথমজাত পুত্র সন্তানকে হত্যা করব|” 24 মিশরে ফেরার পথে মোশি একটি পান্থশালায় রাত্রিযাপন করছিল| তখন প্রভু তাকে হত্যা করতে চেষ্টা করলেন| 25 কিন্তু সিপ্পোরা একটা ধারালো পাথরের ছুরি দিয়ে তার পুত্রের সুন্নত্ করল| এবং সুন্নত্ এর চামড়া (চামড়াটি লিঙ্গের মুখ থেকে ছিঁড়ে বেরিয়েছিল|) মোশির পায়ে ছোঁযাল| তারপর সে মোশিকে বলল, “আমার কাছে তুমি রক্তের স্বামী|” 26 সিপ্পোরা একথা বলেছিল কারণ তার ছেলের সুন্নত্ তাকে করতেই হত| তাই সে তাদের কাছ থেকে সরে এল| 27 প্রভু হারোণকে বললেন, “মরুপ্রান্তরে গিয়ে মোশির সঙ্গে দেখা করো|” প্রভুর কথামতো হারোণ ঈশ্বরের পর্বতে গিয়ে মোশির সঙ্গে দেখা করে তাকে চুম্বন করল| 28 প্রভু য়ে সব কথা বলবার জন্য মোশিকে পাঠিয়েছিলেন এবং প্রভুই য়ে তাকে পাঠিয়েছেন তা প্রমাণ করবার জন্য য়ে সব অলৌকিক কাজ করতে বলেছিলেন তার সম্বন্ধে, সবই মোশি হারোণকে জানাল| প্রভু যা বলেছেন তার সবকিছু মোশি হারোণকে খুলে বলল| 29 সুতরাং মোশি এবং হারোণ ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে প্রবীণ ব্যক্তিদের একত্র করার জন্য গেল| 30 তখন হারোণ সেই কথাগুলো বলল য়েগুলো প্রভু মোশিকে বলতে বলেছিলেন| আর মোশি লোকদের সামনে সেই সকল চিহ্ন কার্য়্য় করে দেখাল| 31 তার ফলে লোকরা বিশ্বাস করল য়ে প্রভু মোশিকে পাঠিয়েছেন| একই সঙ্গে ইস্রায়েলের লোকরা জানল য়ে, ঈশ্বর তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখে তাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন| তাই তারা সকলে নতজানু হয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করতে লাগল|
1 লোকদের সঙ্গে কথা বলার পর মোশি এবং হারোণ ফরৌণের কাছে গিয়ে বলল, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমার সম্মানার্থে উত্সব করার জন্য আমার লোকদের মরুপ্রান্তরে যাওয়ার ছাড়পত্র দাও|” 2 কিন্তু ফরৌণ বলল, “কে প্রভু? আমি কেন তাকে মানব? কেন ইস্রায়েলকে ছেড়ে দেব? এমনকি এই প্রভু কে আমি তাই জানি না| সুতরাং আমি এভাবে ইস্রায়েলের লোকদের ছেড়ে দিতে পারি না|” 3 তখন হারোণ এবং মোশি বলল, “ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন| তাই আমরা তিন দিনের জন্য মরুপ্রান্তরে ভ্রমণের অনুমতি প্রার্থনা করছি, সেখানে আমরা আমাদের প্রভু, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য উত্সর্গ করব| আমরা যদি তা না করি তাহলে তিনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে আমাদের ধ্বংস করে দেবেন| আমাদের মহামারী অথবা যুদ্ধের প্রকোপে মেরে ফেলবেন|” 4 কিন্তু তখন মিশরের রাজা তাদের উত্তর দিলেন, “মোশি ও হারোণ, তোমরা কাজের লোকদের বিরক্ত করছ| ওদের কাজ করতে দাও| গিয়ে নিজের কাজে মন দাও| 5 দেখ, দেশে এখন প্রচুর কর্মী আছে এবং তোমরা তাদের কাজ করা থেকে বিরত করছ|” 6 একই দিনে ক্রীতদাস প্রভুদের এবং ইস্রায়েলীয় তত্ত্বাবধায়কদের ফরৌণ আদেশ দিলেন ইস্রায়েলীয় লোকদের আরো কিছু কঠিনতর কাজ দিতে| 7 ফরৌণ তাদের বললেন, “ইঁট তৈরির জন্য এতদিন তোমরা খড় সরবরাহ করেছো| কিন্তু ওদের বলো, এখন থেকে ইঁট তৈরির জন্য রয়োজনীয় খড় ওরা নিজেরাই য়েন খুঁজে আনে| 8 কিন্তু খড় খুঁজে আনতে হবে বলে ইঁটের উত্পাদন য়েন না কমে| আগে ওরা সারাদিনে য়ে পরিমাণ ইঁট তৈরি করতো নিজেরা খড় জোগাড় করে আনার পরও ওদের আগের মতো একই পরিমাণ ইঁট তৈরি করতে হবে| আজকাল ওরা ভীষণ অলস হয়ে গেছে| এবং সেজন্যই ওরা আমার কাছে মরুপ্রান্তরে যাওয়ার ছাড়পত্র চাইছে| ওদের হাতে বিশেষ কাজ নেই তাই ওরা ওদের ঈশ্বরকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে য়েতে চায়| 9 তাই এই লোকদের আরও কঠিন পরিশ্রম করাও যাতে ওরা ব্যস্ত থাকে| তাহলে ওদের আর প্রতারণামূলক কথা শোনবার সময় হবে না|” 10 তাই মিশরের ক্রীতদাস প্রভু এবং ইস্রায়েলীয় তত্ত্বাবধায়করা ইস্রায়েলের লোকদের কাছে গিয়ে বলল, “ফরৌণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন য়ে ইঁট তৈরির জন্য তোমাদের আর খড় সরবরাহ করা হবে না| 11 এবার থেকে তোমরা নিজেরা খড় জোগাড় করে আনবে| সুতরাং যাও গিয়ে খড় জোগাড় করো| কিন্তু ইঁট তৈরির পরিমাণ আগের মতোই রাখতে হবে| খড় জোগাড়ের নাম করে কম ইঁট তৈরি করলে চলবে না|” 12 সুতরাং লোকরা মিশরের চারিদিকে খড়ের খোঁজে গেল| 13 ক্রীতদাস প্রভুরা ইস্রায়েলীয়দের আরো কঠিন কাজ করালো এবং তাদের একদিনে সমান সংখ্যক ইঁট তৈরি করতে বাধ্য করল যা তারা খড় থাকাকালীন করত| 14 মিশরীয় ক্রীতদাস প্রভুরা ইস্রায়েলীয়দের দিয়ে এই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করানোর দায়িত্ব চাপালো ইস্রায়েলীয় তত্ত্বাবধায়কদের ওপর| মিশরীয় ক্রীতদাস প্রভুরা ইস্রাযেলীয তত্ত্বাবধায়কদের মারলো এবং তাদের বলল, “কেন তোমরা আগের মতো ইঁট তৈরি করতে পারছো না? তোমরা আগে যা করতে পারতে এখনও তোমাদের তাই পারা উচিত্|” 15 তখন ইস্রায়েলীয় তত্ত্বাবধায়করা ফরৌণের কাছে নালিশ জানাতে গেল| তারা ফরৌণকে বলল, “আমরা তো আপনার অনুগত ভৃত্য়, তাহলে আমাদের সঙ্গে কেন এরকম ব্যবহার করছেন? 16 আপনি আমাদের খড় সরবরাহ বন্ধ করেছেন| আবার বলছেন আগের মতোই ইঁটের উত্পাদন চালু রাখতে হবে| ইঁট তৈরির পরিমাণ কম হলেই আমাদের মনিবরা আমাদের মারধোর করছে| আপনার লোকরা এটা তো অন্যায় করছে|” 17 উত্তরে ফরৌণ জানালেন, “তোমরা কাজ করতে চাও না| তোমরা অলস হয়ে গেছ| সেজন্যই তোমরা প্রভুর উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে যাবার ব্যাপারে আমার অনুমতি চেযেছো| 18 যাও, এখন আবার কাজে ফিরে যাও| আমরা আমাদের কোনও খড় সরবরাহ করব না এবং তোমাদের আগের মতোই সমপরিমাণ ইঁট তৈরি করতে হবে|” 19 তখন ইস্রায়েলীয় তত্ত্বাবধায়করা বুঝতে পারল য়ে তারা গভীর সঙ্কটে পড়েছে| তারা জানতো য়ে কিছুতেই তারা আগের পরিমাণ মতো ইঁট আর তৈরি করতে পারবে না| 20 ফরৌণের সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে মোশি এবং হারোণের সঙ্গে তাদের দেখা হল| মোশি ও হারোণ অবশ্য তাদের সঙ্গে দেখা করার জন্যই অপেক্ষা করছিল| 21 সুতরাং ইস্রায়েলীয় তত্ত্বাবধায়করা মোশি ও হারোণকে বলল, “আমাদের যাওয়ার ছাড়পত্র চাওযার ব্যাপারে ফরৌণের সঙ্গে কথা বলে তোমরা একটা মারাত্মক ভুল করেছো| প্রভু য়েন তোমাদের শাস্তি দেন| কারণ তোমাদের জন্যই ফরৌণ ও তার শাসকরা আমাদের এখন ঘৃণা করে| তোমরাই তাদের হাতে আমাদের হত্যা করার অজুহাত তুলে দিয়েছ|” 22 তখন মোশি প্রভুর কাছে ফিরে গেল এবং বলল, “প্রভু কেন আপনি লোকদের এমন অমঙ্গল করলেন? কেন আপনি আমার এখানে পাঠিয়েছিলেন? 23 আপনি যা বলতে বলেছিলেন আমি সে কথাগুলো বলতেই ফরৌণের কাছে গিয়েছিলাম| অথচ সেই সময় থেকেই ফরৌণ আপনার লোকদের প্রতি অত্য়ন্ত খারাপ ব্যবহার করছে| এবং আপনি ঐসব লোকদের সাহায্যের জন্য কোনও কিছুই করছেন না|”
1 প্রভু তখন মোশিকে বললেন, “ফরৌণের এখন আমি কি অবস্থা করব তা তুমি দেখতে পাবে| আমি তার বিরুদ্ধে আমার মহান ক্ষমতা ব্যবহার করব এবং সে আমার লোকদের চলে য়েতে বাধ্য করবে| সে য়ে শুধু আমার লোকদের ছেড়ে দেবে তা নয়, সে তার দেশ থেকে তাদের জোর করে পাঠিয়ে দেবে|” 2 ঈশ্বর তখন মোশিকে আবার বললেন, 3 “আমিই হলাম প্রভু| আমি অব্রাহাম, ইসহাক এবং যাকোবের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতাম| তারা আমায় এল্সদাই (সর্বশক্তিমান ঈশ্বর) বলে ডাকত| আমার নাম য়ে যিহোবা তা তারা জানত না| 4 আমি তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম| আমি তাদের কনান দেশ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম| ঐ দেশে তারা বাস করলেও দেশটি কিন্তু তাদের নিজস্ব দেশ ছিল না| 5 এখন আমি ইস্রায়েলীয়দের বিলাপ শুনেছি যাদের মিশরীয়রা তাদের ক্রীতদাস করে রেখেছিল এবং আমি আমার চুক্তিকে মনে রাখব এবং আমি যা প্রতিশ্রুতি করেছিলাম তাই করব| 6 সুতরাং ইস্রায়েলের লোকদের গিয়ে বলো আমি তাদের বলেছি, ‘আমি হলাম প্রভু| আমি তোমাদের রক্ষা করব| আমিই তোমাদের মুক্ত করব| তোমরা আর মিশরীয়দের ক্রীতদাস থাকবে না| আমি আমার মহান শক্তি ব্যবহার করব এবং মিশরীয়দের ভয়ঙ্কর শাস্তি দেব| তখন আমি তোমাদের উদ্ধার করব| 7 আমি তোমাদের আমার লোক করে নিলাম এবং আমি হব তোমাদের ঈশ্বর| তোমরা জানবে য়ে আমি হলাম তোমাদের প্রভু, ঈশ্বর, য়ে তোমাদের মিশর থেকে মুক্ত করেছে| 8 আমি অব্রাহাম, ইসহাক এবং যাকোবের কাছে একটি মহান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম| আমি তাদের একটি বিশেষ দেশ দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম| তাই আমার নেতৃত্বে তোমরা ঐ দেশে যাবে| আমি তোমাদের ঐ দেশটি দিয়ে দেব| সেই দেশটি একান্তভাবে তোমাদেরই হবে| আমিই হলাম প্রভু|” 9 মোশি এই কথাগুলো ইস্রায়েলীয়দের বলল, কিন্তু তাদের ধৈর্য়্য়হীনতা ও তীব্র পরিশ্রমের দরুণ তারা তার কথা শুনতে অস্বীকার করল| 10 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 11 “যাও মিশরের রাজা ফরৌণকে বলো য়ে তার উচিত্ ইস্রায়েলীয়দের তার দেশ থেকে মুক্তি দেওয়া|” 12 কিন্তু মোশি উত্তরে জানাল, “ইস্রায়েলের লোকরাই আমার কথা শুনতে অস্বীকার করছে, সেক্ষেত্রে ফরৌণ আর কি শুনবে! সেও আমার কথা শুনতে রাজি হবে না| এ ব্যাপারে আমি একরকম নিশ্চিত| তার উপর আমি ভালোভাবে “কথা বলতেও পারি না|” 13 কিন্তু প্রভু মোশি এবং হারোণের সঙ্গে কথা বললেন এবং তাদের ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ও ফরৌণের সঙ্গে কথা বলতে আদেশ দিলেন| ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনতে প্রভু তাদের আদেশ দিলেন| 14 ইস্রায়েলীয় পরিবারগুলির নেতাদের নাম ক্রমানুসারে এইরূপ: ইস্রায়েলের জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম ছিল রূবেণ| তার পুত্ররা ছিল: হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্ম্মি| 15 শিমিয়োনোর পুত্ররা ছিল: য়িমুয়েল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর এবং শৌল য়ে ছিল এক কনানীয়া মহিলার গর্ভজাত সন্তান| 16 লেবি 137 বছর জীবিত ছিলেন| লেবির পুত্রদের নাম হল গের্শোন, কহাত্ ও মরারি| 17 গের্শোনের আবার দুই পুত্র ছিল লিব্নি ও শিমিযি| 18 কহাত্ 133 বছর পর্য়ন্ত জীবিত ছিল| কহাতের পুত্ররা হল অম্রম, যিষ্হর, হিব্রোণ এবং উষীয়েল| 19 মরারির দুই পুত্র হল মহলি ও মুশি| এই প্রত্যেকটি পরিবারের প্রথম পূর্বপুরুষ ছিল ইস্রায়েলের সন্তান লেবি| 20 অম্রম বেঁচে ছিল 137 বছর| অম্রম তার আপন পিসি য়োকেবদকে বিয়ে করেছিল| অম্রম ও য়োকেবদের দুই সন্তান হল যথাক্রমে হারোণ এবং মোশি| 21 য়িষ্হরের পুত্ররা হল কোরহ, নেফগ ও সিখ্রি| 22 আর উষীয়েলের সন্তান হল মীশায়েল, ইল্সাফন ও সিথ্রি| 23 হারোণ অম্মীনাদবের কন্যা, নহোশনের বোন ইলীশেবাকে বিয়ে করেছিল| হারোণ ও ইলীশেবার সন্তানরা হল নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর ও ইথামর| 24 কোরহের পুত্র অসীর, ইল্কানা ও অবীযাসফ হল কোরহীয় গোষ্ঠীর পূর্বপুরুষ| 25 হারোণের পুত্র ইলিয়াসর পূটীয়েলের এক কন্যাকে বিয়ে করার পরে তাদের য়ে সন্তান হয় তার নাম দেওয়া হয় পীনহস| এরা প্রত্যেকেই ইস্রায়েলের পুত্র লেবির বংশজাত| 26 হারোণ এবং মোশি ছিল এই পরিবারগোষ্ঠীর| প্রভু তাদের দুজনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমার লোকদের মিশর থেকে দলে দলে বাইরে নিয়ে এসো|” 27 হারোণ এবং মোশি উভয়েই মিশরের রাজা ফরৌণের সঙ্গে কথা বলেছিল| তারাই ফরৌণকে বলেছিল ইস্রায়েলের লোকদের মিশর থেকে ছেড়ে দেওয়া হোক| 28 মিশরে য়েদিন প্রভু মোশির সঙ্গে কথা বললেন, 29 তিনি তাকে বলেছিলেন, “আমিই হলাম প্রভু| আমি তোমাকে যা কিছু বলেছি তা মিশরের রাজা ফরৌণকে গিয়ে বলো|” 30 কিন্তু মোশি উত্তর দিল, “আমি ভালোভাবে কথা বলতে পারি না| রাজা আমার কথা শুনবে না|”
1 প্রভু তখন মোশিকে বললেন, “আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে একজন ঈশ্বর করে তুলেছি| আর হারোণ তোমার ভাই হবে তোমার ভাববাদী| 2 তোমার ভাই হারোণকে আমার সমস্ত আদেশগুলো বলো| তাহলে হারোণ রাজাকে আমার কথাগুলো জানাবে| ফরৌণ ইস্রায়েলীয়দের তার দেশ থেকে চলে য়েতে অনুমতি দেবে| 3 কিন্তু আমি ফরৌণকে জেদী করে তুলব| তাই সে তোমাদের কথা মানবে না| তখন আমি নিজেকে প্রমাণের উদ্দেশ্যে মিশরে নানারকম অলৌকিক অথবা অদ্ভুত কাজ করবে| তবুও সে তোমাদের কথা শুনবে না| তখন আমি মিশরকে কঠিন শাস্তি দেব এবং আমি মিশর থেকে আমার লোকদের বাইরে বের করে আনব| 4 5 যখন আমি তাদের বিরোধিতা করব তখন মিশরের লোকরাও জানতে পারবে য়ে আমিই হলাম প্রভু| সেই মুহুর্তে আমি আমার লোকদের মিশরীয়দের দেশ থেকে বের করে আনব|” 6 প্রভু তাদের যা বলেছিলেন মোশি এবং হারোণ তা মেনে চলেছিল| 7 যখন তারা ফরৌণের সঙ্গে কথা বলেছিল সেই সময় মোশির বয়স ছিল 80 এবং হারোণের বয়স ছিল 83 বছর| 8 মোশি এবং হারোণকে প্রভু বললেন, 9 “ফরৌণ তোমাদের শক্তির পরিচয়ের প্রমাণ হিসাবে কোনও অলৌকিক কাজ ঘটিযে দেখাতে বলবে| তখন হারোণকে বলবে তোমার পথ চলার লাঠিটি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলতে| ফরৌণের চোখের সামনে মাটিতে পড়ে থাকা ঐ লাঠি নিমেষের মধ্যে সাপে পরিণত হবে|” 10 তাই মোশি এবং হারোণ প্রভুর কথামতো ফরৌণের কাছে গেল| হারোণ তার সামনে লাঠিটি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলেছিল| ফরৌণ এবং তার সভাসদদের চোখের সামনেই লাঠি সাপের রূপ নিল| 11 রাজা এই ঘটনা দেখে তার জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি ও যাদুকরদের ডাকলেন| রাজার নিজস্ব যাদুকররা তাদের মায়াবলে হারোণের মতো তাদের লাঠিটিও সাপে পরিণত করে দেখাল| 12 সেইসব যাদুকররাও নিজের নিজের হাতের লাঠিকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে মুহুর্তে লাঠিগুলিকে সাপে রূপান্তরিত করে দেখাল| কিন্তু হারোণের লাঠি তাদের লাঠিগুলোকে গ্রাস করে নিল| 13 তবুও ফরৌণ উদ্ধত হয়ে থাকলেন| প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ীরাজা মোশি এবং হারোণের কথায় কান দিলেন না| 14 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণ লোকদের ছেড়ে না দেবার জেদ ধরে রইল| 15 সকালে ফরৌণ নদীর দিকে যায| তুমিও তার সঙ্গে দেখা করার জন্য নীল নদের তীরে দাঁড়াবে| সাপে পরিণত হয় ঐ লাঠিকে সঙ্গে নেবে| 16 ফরৌণকে বলবে: ‘প্রভু ইস্রাযেলীযদের ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন| আমায আপনাকে বলতে বলেছেন য়ে তাঁর লোকদের য়েন তাঁর উপাসনার জন্য মরুপ্রান্তরে য়েতে দেওয়া হয়| এখনও পর্য়ন্ত অবশ্য আপনি প্রভুর কথা শোনেন নি| 17 তাই প্রভু আপনার সম্মুখে নিজের স্বরূপ প্রমাণের উদ্দেশ্যে কিছু কাণ্ড ঘটাবেন| এবার দেখুন আমি আমার পথ চলার লাঠি দিয়ে নীল নদের জলে আঘাত করব এবং সঙ্গে সঙ্গে নদীর জল রক্তে পরিণত হবে| 18 নদীর সমস্ত মাছ মারা যাবে এবং নদীর জলে দুর্গন্ধ ছড়াবে| ফলে মিশরীয়রা আর এই নদীর জল পান করতে পারবে না|” 19 প্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে বলো এই লাঠি নিয়ে সে য়েন মিশরের সমস্ত জলাশয, নদী, খাল, বিল, হ্রদ প্রত্যেকটি জায়গার জলে স্পর্শ করে| লাঠির স্পর্শে সমস্ত জলাশযের জল রক্তে পরিণত হবে| এমনকি কাঠ ও পাথরের পাত্রে সংগ্রহ করে রাখা পানীয় জলও রক্তে পরিণত হবে|” 20 সুতরাং মোশি এবং হারোণ প্রভুর আদেশ কার্য়কর করল| হারোণ ফরৌণ ও তার সভাসদগণের সামনেই তার হাতে লাঠি উঁচিযে ধরে নীল নদের জলে আঘাত করল| আর সঙ্গে সঙ্গে নদীর জল রক্তে পরিণত হল| 21 নদীর সমস্ত মাছ মারা গেল এবং নদীর জলে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করল| ফলে মিশরীয়রা আর সেই নদীর জল পান করতে পারল না| মিশরের সমস্ত জলাধারের জলই রক্তে পরিণত হল| 22 হারোণ ও মোশির মতো রাজার যাদুকররাও তাদের মাযাবলে একই ঘটনা ঘটিযে প্রমাণ করল তারাও কম জানে না| ফলে প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ীফরৌণ আবার মোশি ও হারোণের কথা শুনতে অস্বীকার করলেন| 23 ফরৌণ মোশি ও হারোণের ঐ কথায় মনোয়োগ না দিয়ে নিজের প্রাসাদে ঢুকে গেলেন| 24 মিশরীয়রা নদীর জল পান করতে না পেরে তারা পানীয় জলের সন্ধানে নদীর চারপাশে কুঁযো খুঁড়তে লাগল| 25 প্রভুর নীলনদের জলকে রক্তে পরিণত করার পর সাতদিন পার হল|
1 প্রভু তখন মোশির উদ্দেশ্যে বললেন, “ফরৌণকে গিয়ে বলো য়ে প্রভু বলেছেন, ‘আমার লোকেদের আমাকে উপাসনার জন্য ছেড়ে দাও! 2 যদি তুমি ওদের ছেড়ে না দাও তাহলে আমি মিশর দেশ ব্যাঙে ভর্তি করে দেব| 3 নীল নদ ব্যাঙে ভর্তি হয়ে উঠবে| নদী থেকে ব্যাঙরা উঠে এসে তোমার ঘরে শয়্য়াকক্ষে প্রবেশ করে বিছানায উঠে বসবে| তোমার উনুনের চুল্লি, জলের পাত্র ব্যাঙে ভরে যাবে| তোমার সভাসদগণের ঘরও ব্যাঙে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে| 4 তোমাদের চারিদিকে ব্যাঙরা ঘুরে বেড়াবে| তোমার সভাসদগণ, তোমার লোকদের এবং তোমার গায়েও ব্যাঙ ছেঁকে ধরবে|” 5 প্রভু এরপর মোশিকে বললেন, “তুমি হারোণকে বলো সে য়েন তার হাতের পথ চলার লাঠি নদী, খালবিল ও হ্রদের ওপর বিস্তার করে মিশর দেশে ব্যাঙ এনে ভরিয়ে দেয়|” 6 হারোণ মিশরের জলের ওপর তার লাঠি সমেত হাত বিস্তার করতেই নদী, খালবিল ও হ্রদ থেকে রাশি রাশি ব্যাঙ উঠে মিশরের মাটি ঢেকে ফেলল| 7 হারোণের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে রাজার যাদুকররাও তাদের মাযাজাল বিস্তার করে একই কাণ্ড ঘটিযে দেখাল| ফলে মিশরের মাটিতে আরও অসংখ্য ব্যাঙ উঠে এলো| 8 ফরৌণ এবার বাধ্য হয়ে মোশি এবং হারোণকে ডেকে পাঠিয়ে তাদের বললেন, “প্রভুকে বলো তিনি য়েন আমাকে এবং আমার লোকদের এই ব্যাঙের উপদ্রব থেকে রেহাই দেন| আমি প্রভুকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য লোকদের যাবার ছাড়পত্র দেব|” 9 মোশি ফরৌণকে বলল, “বলুন, আপনি কখন চান য়ে এই ব্যাঙরা ফিরে যাক্| আমি আপনার জন্য, আপনার সভাসদগণ ও প্রজাদের জন্য তাহলে প্রার্থনা করব| তারপরই ব্যাঙরা আপনাকে এবং আপনার ঘর ছেড়ে নদীতে ফিরে যাবে| ব্যাঙরা নদীতেই থাকে| বলুন আপনি কবে এই ব্যাঙদের উপদ্রব থেকে অব্যাহতি চান?” 10 উত্তরে ফরৌণ জানালেন, “আগামীকাল|”মোশি বলল, “বেশ আপনার কথা মতো তাই হবে| তবে এবার নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পেরেছেন য়ে আমাদের প্রভু ঈশ্বরের মতো আর কোন ঈশ্বর এখানে নেই| 11 ব্যাঙরা আপনাকে, আপনার ঘর এবং আপনার সভাসদগণ ও প্রজাদের সবাইকে ছেড়ে ফিরে যাবে| কেবলমাত্র নদীতেই তারা এবার থেকে বাস করবে|” 12 এরপর মোশি এবং হারোণ ফরৌণের কাছ থেকে ফিরে এলো| ফরৌণের বিরুদ্ধে পাঠানো সমস্ত ব্যাঙদের সরিয়ে নেবার জন্য মোশি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল| 13 মোশির প্রার্থনায সাড়া দিয়ে প্রভু ঘরে, বাইরে, মাঠে ঘাটের সমস্ত ব্যাঙকে মেরে ফেললেন| 14 কিন্তু মৃত ব্যাঙের স্তূপ পচতে শুরু করল এবং সারা দেশ দুর্গন্ধে ভরে উঠল| 15 ব্যাঙদের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়ার পরই ফরৌণ আবার একগুঁয়ে ও জেদী হয়ে উঠলেন| প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ীমোশি ও হারোণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাজা পালন করলেন না| 16 প্রভু তখন মোশিকে বললেন, “হারোণকে বলো তার হাতের লাঠি দিয়ে মাটির ধূলোয় আঘাত করতে, এবং তারপর সেই ধূলো মিশরের সর্বত্র উকুনে পরিণত হবে|” 17 হারোণ প্রভুর কথামতো ধূলোতে তার লাঠি আঘাত করতেই মিশরের সর্বত্র ধূলো উকুনে পরিণত হল| এবং সেই উকুনগুলো মানুষ ও পশুদের ঘায়ের ওপর চড়ে বসল| 18 রাজার যাদুকররা এবারও একই জিনিস করে দেখানোর চেষ্টা করল কিন্তু তারা কিছুতেই ধূলোকে উকুনে পরিণত করতে পারল না| কিন্তু সেই উকুনগুলো মানুষ ও পশুদের শরীরে রয়ে গেল| 19 যাদুকররা এবারে ব্যর্থ হয়ে গিয়ে রাজা ফরৌণকে বলল য়ে ঈশ্বরের শক্তিই এটাকে সম্ভব করেছে| কিন্তু ফরৌণ তাদের কথাতে কান দিলেন না| প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারেই অবশ্য এই ঘটনা ঘটল| 20 প্রভু মোশিকে বললেন, “সকালে উঠে ফরৌণের কাছে যাবে| ফরৌণ নদীর তীরে যাবে| তখন তাকে বলবে প্রভু বলেছেন, ‘আমার উপাসনার জন্য আমার লোকদের ছেড়ে দাও| 21 যদি তুমি তাদের ছেড়ে না দাও তাহলে তোমার ঘরে মাছির ঝাঁক ঢুকবে| শুধু তোমার ঘরেই নয় তোমার সভাসদগণ ও তোমার প্রজাদের ঘরেও মাছির ঝাঁক ঢুকবে| মিশরের প্রত্যেকটি ঘর মাছির ঝাঁকে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে| মিশরের মাঠে ঘাটে সর্বত্র শুধু ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি উড়ে বেড়াবে! 22 কিন্তু মিশরীয়দের মতো ইস্রায়েলের লোকদের আমি এই যন্ত্রণা ভোগ করাবো না| গোশন প্রদেশে, যেখানে আমার লোকরা বাস করে, সেখানে একটিও মাছি থাকবে না| কারণ সেখানে আমরা লোকরা বাস করে| এর ফলে তুমি বুঝতে পারবে য়ে এই দেশে আমিই হলাম প্রভু| 23 সুতরাং আগামীকাল থেকেই তুমি আমার এই বিভেদ নীতির প্রমাণ পাবে|” 24 সুতরাং প্রভু তাই করলেন যা তিনি বলেছিলেন| ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি মিশরে এসে গেল| ফরৌণের বাড়ী এবং তাঁর সভাসদগণের বাড়ী মাছিতে ভরে গেল| মাছিগুলোর জন্য সমগ্র মিশর ধ্বংস হল| 25 ফরৌণ মোশি এবং হারোণকে ডেকে বলল, “তোমরা তোমাদের ঈশ্বরকে এই দেশের মধ্যেই নৈবেদ্য উত্সর্গ করো|” 26 কিন্তু মোশি বলল, “না, তা এখানে করা ঠিক হবে না| কারণ প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পশু বলিদান মিশরীয়দের চোখে ভয়ঙ্কর ব্যাপার| আমরা যদি এখানে তা করি তাহলে মিশরীয়রা আমাদের দেখতে পেয়ে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করবে| 27 তাই তিন দিনের জন্য আমাদের প্রভু ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য আমাদের মরুপ্রান্তরে য়েতে দিন| প্রভুই আমাদের এটা করতে বলেছেন|” 28 সব শুনে ফরৌণ বলল, “বেশ আমি তোমাদের মরুপ্রান্তরে যাবার ছাড়পত্র দিচ্ছি| তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য| কিন্তু মনে রেখো তোমরা কিন্তু বেশী দূর চলে যাবে না| এখন যাও এবং আমার জন্য প্রার্থনা করো|” 29 তখন মোশি ফরৌণকে বলল, “দেখুন, আমি যাব এবং প্রভুকে অনুরোধ করব যাতে আগামীকাল তিনি আপনার কাছ থেকে, আপনার লোকদের কাছ থেকে এবং আপনার সভাসদগণের কাছ থেকে মাছিগুলো সরিয়ে নেন| কিন্তু আপনি য়েন আবার আগের মতো প্রভুকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করার বিষযটি নিয়ে পরে আপত্তি করবেন না|” 30 এই কথা বলে মোশি ফরৌণের কাছ থেকে ফিরে এল এবং প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল| 31 এবং মোশির প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে প্রভু ফরৌণকে, সভাসদগণ ও প্রজাদের মাছির উপদ্রব থেকে রক্ষা করলেন| মিশর থেকে মাছিদের বের করে দিলেন| আর একটি মাছিও সেখানে রইল না| 32 কিন্তু ফরৌণ আবার জেদী হয়ে গেলেন এবং লোকদের য়েতে দিলেন না|
1 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, ফরৌণকে গিয়ে বল, “প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমার লোকদের আমার উপাসনা করার জন্য ছেড়ে দাও|’ 2 তুমি যদি তাদের ধরে রাখো এবং য়েতে বাধা দাও 3 তাহলে প্রভু তোমার গবাদি পশুদের ওপর তাঁর ক্ষমতা প্রযোগ করবেন| তোমার সমস্ত ঘোড়া, গাধা, উট, গরু ও মেষের পাল প্রভুর কোপে এক ভয়ঙ্কর রোগের শিকার হবে| 4 কিন্তু প্রভু মিশরের পশুদের মতো ইস্রায়েলের পশুদের দুর্দশাগ্রস্ত করবেন না| ইস্রায়েলের লোকদের কোনও পশু মারা যাবে না| 5 আগামীকাল এই ঘটনা ঘটাবার জন্য প্রভু সময় নির্বাচন করেছেন|” 6 পরদিন, প্রভু য়েমন বলেছিলেন তেমন করলেন| মিশরীয়দের সমস্ত গৃহপালিত পশু মারা গেল| কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের কোনও পশু মারা গেল না| 7 ইস্রায়েলীয়দের কোনও পশু মারা গেছে কিনা তা দেখে আসতে ফরৌণ তাঁর কর্মচারীদের পাঠালেন এবং সে জানতে পারলো য়ে ইস্রায়েলীয়দের একটি পশুও মারা যায নি| কিন্তু তবুও ফরৌণ তাঁর জেদ ধরে রইলেন এবং লোকদের য়েতে দিলেন না| 8 প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন, “একটা উনুন থেকে এক মুঠো ছাই নাও| মোশি তুমি সেই ছাই ফরৌণের সামনে বাতাসে ছুঁড়ে দাও| 9 এই ছাই ধূলিকণা হয়ে সারা মিশরে ছড়িয়ে পড়বে| এবং যখনই এই ধূলো মিশরের কোনও মানুষ বা পশুর গায়ে পড়বে তখনই তাদের গায়ে ফোঁড়া হবে|” 10 তাই মোশি ও হারোণ উনুন থেকে ছাই নিয়ে ফরৌণের সামনে দাঁড়াল| মোশি সেই ছাই আকাশে ছুঁড়ে দিল আর পশু ও মানুষের গায়ে ফোঁড়া বের হতে লাগল| 11 যাদুকররা মোশির সঙ্গে প্রতিয়োগিতা করতে পারল না| কারণ তাদেরও সারা গায়ে ফোঁড়া ছিল| মিশরের প্রতিটি জায়গায় এই রোগ দেখা দিল| 12 কিন্তু এতে প্রভু ফরৌণকে আরও উদ্ধত করে তুললেন| তাই ফরৌণ তাদের কথা শুনতে অস্বীকার করল| প্রভুর কথামতোই এসব ঘটেছিল| 13 এরপর প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “সকালে উঠে ফরৌণের কাছে গিয়ে বলবে, প্রভু ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমার লোকদের আমার উপাসনা করতে য়েতে দাও| 14 যদি তুমি তা না কর, তবে আমি তোমার জন্য, তোমার সমস্ত রাজকর্মচারীদের জন্য এবং লোকদের জন্য সমস্ত রকমের দুর্ভোগ পাঠাবো| তখন তুমি জানবে য়ে এই পৃথিবীতে আমার মতো ঈশ্বর আর নেই, 15 আমি আমার ক্ষমতা দিয়ে তোমাদের এমন রোগ দিতে পারি যা তোমাদের পৃথিবী থেকে মুছে দেবে| 16 কিন্তু আমি তোমাদের একটা কারণে এখানে রেখেছি| আমি তোমাকে আমার ক্ষমতা দেখানোর জন্য রেখেছি| যাতে সারা পৃথিবীর লোক আমার কথা শুনতে পারে| 17 তুমি এখনও আমার লোকদের সঙ্গে বিরোধিতা করছ এবং তাদের য়েতে দিচ্ছ না| 18 “তাই আগামীকাল এই সময় আমি এক ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি ঘটাবো| মিশরের শুরু থেকে আজ পর্য়ন্ত এই রকম ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি আর কখনও হয় নি| 19 এখন তুমি তোমার পশুদের একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাও| তোমার ক্ষেতে যা কিছু আছে সব একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাও| কেন? কারণ কোন লোক যদি ক্ষেতে পড়ে থাকে, তবে সে মারা যাবে; যদি কোন পশু মাঠে পড়ে থাকে সে মারা যাবে| তোমার বাড়ীর বাইরে যা কিছু পড়ে থাকবে সে সব কিছুর ওপরেই শিলাবৃষ্টি হবে|” 20 ফরৌণের সেই কর্মচারীরা যারা প্রভুর বার্তাকে গুরুত্ব দিয়েছিল তারা তাদের পশু ও ক্রীতদাসদের ক্ষেত থেকে নিয়ে এলো এবং ঘরে রেখে দিল| 21 কিন্তু য়ে সব কর্মচারীরা প্রভুর বার্তা অগ্রাহ্য করেছিল তারা তাদের ক্রীতদাসদের ও পশুদের মাঠে রেখে দিল| 22 প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত আকাশের দিকে তুলে ধরো, তাহলে মিশরের ওপর শিলাবৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে| মিশরের সমস্ত ক্ষেতের মানুষ, পশু ও গাছপালার ওপর এই শিলাবৃষ্টি হবে|” 23 তাই মোশি তার হাতের ছড়ি আকাশের দিকে তুলল, তারপর প্রভু ভূমির ওপর বজ্রনির্ঘোষ, শিলাবৃষ্টি ও অশনি ঘটালেন| সারা মিশরে শিলাবৃষ্টি হল| 24 শিলাবৃষ্টি হচ্ছিল এবং চারিদিকে বিদ্যুত চমকাচ্ছিল| এই ধরণের ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি মিশরের শুরু থেকে আজ পর্য়ন্ত আগে কখনও হয়নি| 25 এই শিলাবৃষ্টি মিশরের ক্ষেতের সমস্ত কিছু, লোকজন ও পশুসহ গাছপালা ধ্বংস করে দিল| এই শিলাবৃষ্টিতে মাটির সমস্ত গাছ ভেঙ্গে পড়েছিল| 26 একমাত্র ইস্রায়েলের লোকদের বাসস্থান গোশন প্রদেশে শিলাবৃষ্টি হল না| 27 ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “এইবার বুঝেছি য়ে আমি পাপ করেছি| প্রভুই ঠিক ছিলেন| আমি ও আমার লোকরা ভুল করেছি| 28 প্রভুর দেওয়া শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত আর সহ্য হচ্ছে না| ঈশ্বরকে গিয়ে এই ঝড় থামাতে বল| তাহলে আমি তোমাদের য়েতে দেব, তোমাদের আর এখানে থাকতে হবে না|” 29 মোশি ফরৌণকে বললেন, “আমি যখন শহর ত্যাগ করে যাবো তখন আমি প্রভুকে প্রার্থনার ভঙ্গীতে আমার হাতগুলো ওপরে তুলব| এবং তারপর বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি থামবে| তখন তুমি জানবে য়ে এই পৃথিবী প্রভুর অধিকারে| 30 কিন্তু আমি জানি য়ে তুমি এবং তোমার কর্মচারীরা এখনও প্রভুকে শ্রদ্ধা করো না|” 31 য়ব ও শন গাছে ফুল এসে গিয়েছিল| তাই এই সমস্ত শস্য নষ্ট হয়ে গেল| 32 কিন্তু য়েহেতু গম ও জনার বড় হল না তাই সেগুলো নষ্ট হল না| 33 মোশি ফরৌণের কাছে থেকে শহরের বাইরে গেল, প্রভুকে প্রার্থনা করার ভঙ্গীতে তাঁর হাতগুলো ওপরে তুলল এবং তত্ক্ষণাত্ বজ্র, শিলাবৃষ্টি এমনকি বৃষ্টিও থেমে গেল| 34 যখন ফরৌণ দেখল বৃষ্টি, বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি থেমে গিয়েছে তখন তিনি আবার ভুল করলেন| তিনি ও তার কর্মচারীরা জেদী হয়ে গেল| 35 ফরৌণ উদ্ধত হলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের য়েতে দিতে অস্বীকার করলেন| এসবই হয়েছিল ঠিক প্রভু য়েমন মোশিকে বলেছিলেন সেইরকম ভাবেই|
1 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণের কাছে যাও, আমি তাকে ও তার কর্মচারীদের জেদী করে তুলেছি যাতে আমি আমার অলৌকিক শক্তি তাদের দেখাতে পারি| 2 আমি এটা এই কারণেও করেছি যাতে তোমরা, তোমাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের আমি মিশরীয়দের বিরুদ্ধে কি কি করেছিলাম এবং মিশরে কেমন করে চিহ্ন-কার্য়্য়গুলি করেছিলাম তার সম্বন্ধে বলতে পারো| তাহলে তোমরা সবাই জানতে পারবে য়ে আমিই প্রভু|” 3 তাই মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গেল এবং বলল, “প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর বলেছেন, ‘তুমি আর কতদিন প্রভুকে অমান্য করবে? আমার লোকদের আমার উপাসনা করতে য়েতে দাও| 4 তুমি যদি আমার আদেশ অমান্য কর তবে আগামীকাল আমি তোমাদের এই দেশে পঙ্গপাল নিয়ে আসব| 5 পঙ্গপালরা সারা দেশ ঢেকে ফেলবে, চারিদিকে এত পঙ্গপাল আসবে য়ে তোমরা মাটি দেখতে পাবে না| শিলাবৃষ্টির হাত থেকে যা কিছু বেঁচে গিয়েছে সেসব পঙ্গপালরা খেযে ফেলবে, মাঠের প্রত্যেকটি গাছের সমস্ত পাতা এই পঙ্গপালরা খেয়ে ফেলবে| 6 তোমার সমস্ত ঘর, তোমার কর্মচারীদের ঘর এবং মিশরের সব ঘর পঙ্গপালে ভরে যাবে| এত পঙ্গপাল হবে যা তোমার পিতামাতা অথবা তোমার পিতামহরা কখনও দেখে নি| মিশরে জনবসতি গড়ে ওঠার সময় থেকে আজ পর্য়ন্ত এত পঙ্গপাল আর কখনও কেউ দেখে নি|”‘ তারপর মোশি পিছন ফিরে ফরৌণকে ছেড়ে চলে গেল| 7 এরপর ফরৌণের কর্মচারীরা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “আর কতদিন আমরা এই লোকদের ফাঁদে পড়ে থাকব? এদের ঈশ্বর, প্রভুর উপাসনা করতে য়েতে দিন, আপনি যদি তা না করেন তবে আপনার বোঝার আগেই মিশর ছারখার হয়ে যাবে|” 8 তখন ফরৌণ তাঁর কর্মচারীদের বললেন মোশি ও হারোণকে ফিরিযে আনতে| তারা এলে ফরৌণ তাদের বললেন, “যাও, তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপাসনা কর| কিন্তু আমাকে বলে যাও ঠিক কারা কারা যাচ্ছে?” 9 মোশি উত্তর দিল, “আমাদের সমস্ত লোক যুবক ও বৃদ্ধ সকলেই যাবে| আমরা আমাদের পুত্রদের, কন্যাদের, মেষ, গবাদি পশু এবং প্রত্যেকটি জিনিস আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাব| কারণ প্রভু আমাদের সকলকেই উত্সবে আমন্ত্রণ করেছেন|” 10 ফরৌণ তাদের বললেন, “আমি তোমাদের ও তোমাদের সন্তানদের মিশরে ছেড়ে য়েতে দেওয়ার আগে প্রভুকে সত্যিই তোমাদের সঙ্গে থাকতে হবে! দেখ তোমাদের নিশ্চয়ই কোন কু-মতলব আছে| 11 শুধুমাত্র পুরুষরাই প্রভুর উপাসনা করতে পারবে কারণ প্রথমে তোমরা একথাই বলেছিলে| কিন্তু তোমাদের সব লোক য়েতে পারবে না|” এরপর ফরৌণ মোশি ও হারোণকে বিদায় দিলেন| 12 প্রভু এবার মোশিকে বললেন, “তুমি মিশরের ওপর তোমার হাত মেলে দাও| তাতে পঙ্গপালরা আসবে| সারা মিশর পঙ্গপালে ভরে যাবে| শিলাবৃষ্টিতে য়ে সব গাছ নষ্ট হয় নি সেগুলি পঙ্গপাল খেযে ফেলবে|” 13 মোশি তার হাতের ছড়ি মিশরের ওপর তুলে ধরল| এবং প্রভু পূর্ব দিক থেকে এক প্রবল বাতাস পাঠালেন| সারা দিন সারা রাত ধরে সেই হাওযা বয়ে গেল| এবং সকালবেলা সেই হাওয়ায় পঙ্গপালরা এসে মিশরে ঢুকে পড়ল| 14 পঙ্গপালরা উড়ে এসে মিশরের মাটিতে বসল| এত পঙ্গপাল ইতিপূর্বে কখনও মিশরে দেখা যায় নি আর বোধ হয় পরবর্তী কালেও কখনও দেখা যাবে না| 15 পঙ্গপালরা মাটি ঢেকে ফেলল এবং সারা দেশ অন্ধকার হয়ে গেল| শিলাবৃষ্টি যা ধ্বংস করে নি সে সমস্ত গাছ এবং গাছের ফল পঙ্গপাল খেযে ফেলল, মিশরের কোথাও কোনও গাছ বা লতা-পাতাও অবশিষ্ট রইল না| 16 ফরৌণ তাড়াতাড়ি মোশি ও হারোণকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “আমি তোমাদের ও তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে পাপ করেছি| 17 এবারকার মতো আমার অপরাধ ক্ষমা করে দাও| তোমাদের প্রভুকে বল এই পঙ্গপালগুলোকে সরিয়ে নিতে|” 18 মোশি ফরৌণের কাছ থেকে চলে গেল এবং প্রভুর কাছে তার জন্য প্রার্থনা করল| 19 প্রভু হাওযার দিক পরিবর্তন করে পশ্চিম দিক থেকে বাতাস পাঠালেন, এই প্রবল হাওয়ায় সমস্ত পঙ্গপাল মিশর থেকে বেরিয়ে গিয়ে সূফ সাগরে পড়ল| মিশরে আর একটিও পঙ্গপাল রইল না| 20 কিন্তু প্রভু আবার ফরৌণকে জেদী করে তুললেন এবং ফরৌণ ইস্রায়েলের লোকদের য়েতে দিলেন না| 21 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত উপরে আকাশের দিকে তুলে দাও যাতে সারা মিশর অন্ধকারে ঢেকে যায| অন্ধকার এত গাঢ় হবে য়ে তোমরা তা অনুভব করতে পারবে|” 22 তাই মোশি আকাশের দিকে হাত তুলল, তখন কালো মেঘ এসে মিশরকে ঢেকে ফেলল| তিন দিন ধরে এই অন্ধকার রইল| 23 কেউ কাউকে দেখতে পেল না বা কেউ উঠে কোথাও য়েতে পারল না| কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা যেখানে বাস করত সেখানে আলো ছিল| 24 আবার ফরৌণ মোশিকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “যাও গিয়ে তোমাদের প্রভুর উপাসনা কর| তোমরা তোমাদের সন্তানদের নিয়ে য়েতে পারবে কিন্তু গরু বা মেষের দল নিতে পারবে না, এখানে রেখে যাবে|” 25 মোশি বলল, “না, আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে উত্সর্গ এবং হোমবলি দেওয়ার জন্য আপনাকে আমাদের পশুসমূহ দিতে হবে| 26 হ্যাঁ, এবং আমরা আমাদের পশুসমূহ প্রভুর উপাসনার জন্য নিয়ে যাব| আমরা একটা ক্ষুরও ফেলে যাব না| কারণ আমরা জানি না আমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপাসনার জন্য ঠিক কি কি লাগবে| একথা আমরা আমাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে জানতে পারব| তাই আমরা এ সবকিছুই সঙ্গে নিয়ে যাব|” 27 প্রভু আবার ফরৌণকে জেদী করে তুললেন এবং ফরৌণ তাদের য়েতে বাধা দিলেন| 28 ফরৌণ মোশিকে বললেন, “এখান থেকে দুর হয়ে যাও, আর কখনও য়েন এখানে তোমাকে না দেখি, যদি তুমি এখানে আমার কাছে দেখা করতে আসো তবে তোমায় মরতে হবে|” 29 তখন মোশি বলল, “তুমি একটা কথা ঠিকই বলেছো, আমি আর কখনও তোমার কাছে আসব না|”
1 প্রভু তখন মোশিকে বললেন, “মিশর এবং ফরৌণের বিরুদ্ধে আমি আরেকটি বিপর্য়য বয়ে আনব| তারপর, সে তোমাদের সবাইকে পাঠিয়ে দেবে| বস্তুত সে তোমাদের চলে য়েতে বাধ্য করবে| 2 তুমি ইস্রায়েলের লোকদের এই বার্তা পাঠাবে: ‘নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে তোমরা নিজের নিজের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সোনা ও রূপোর অলঙ্কার চাইবে| 3 প্রভু মিশরীয়দের তোমাদের প্রতি দযালু করে তুলবেন| মিশরের লোকরা, এমনকি ফরৌণের কর্মচারীরা মোশিকে এক মহান ব্যক্তির মর্য়াদা দেবে|”‘ 4 মোশি লোকদের জানাল, “প্রভু বলেছেন, ‘আজ মধ্যরাত নাগাদ আমি মিশরের মধ্যে দিয়ে যাব| 5 এবং তার ফলে মিশরীয়দের সমস্ত প্রথমজাত পুত্ররা মারা যাবে| রাজা ফরৌণের প্রথমজাত পুত্র থেকে শুরু করে য়াঁতাকলে শস্য পেষনকারিণী দাসীর প্রথমজাত পুত্র পর্য়ন্ত সবাই মারা যাবে| এমনকি পশুদেরও প্রথম শাবক মারা যাবে| 6 তারপর সমস্ত মিশরে এমন জোরে কান্নার রোল উঠবে যা অতীতে কখনও হয় নি এবং যা ভবিষ্যতেও কখনও হবে না| 7 কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের কোনরকম ক্ষতি হবে না| এমন কি কোনো কুকুর পর্য়ন্ত ইস্রায়েলীয়দের অথবা তাদের পশুদের দিকে ঘেউ ঘেউ করে চিত্কার করবে না| এর ফলে, তোমরা বুঝতে পারবে আমি মিশরীয়দের থেকে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে কতখানি অন্যরকম আচরণ করি| 8 তখন তোমাদের সমস্ত (মিশরীয় কর্মচারীরা) নতজানু হবে এবং আমার উপাসনা করবে| তারা বলবে, “তুমি তোমার সমস্ত লোককে তোমার সঙ্গে নিয়ে চলে যাও|” তখন মোশি ক্রোধে ফরৌণকে ছেড়ে চলে গেল|” 9 প্রভু এরপর মোশিকে আরও বললেন য়ে, “ফরৌণ তোমার কথা শোনে নি| কেন শোনে নি? শোনে নি বলেই তো আমি মিশরের ওপর আমার মহাশক্তির প্রভাব দেখাতে পেরেছিলাম|” 10 মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গিয়েছিল এবং এই সমস্ত অলৌকিক কাজগুলো করেছিল| কিন্তু প্রভু ফরৌণের হৃদয়কে উদ্ধত করেছিলেন যাতে সে ইস্রায়েলীয়দের তার দেশ থেকে য়েতে না দেয়|
1 মোশি ও হারোণ মিশরে থাকার সময় প্রভু তাদের বললেন, 2 “এই মাস হবে তোমাদের জন্য বছরের প্রথম মাস, 3 এই আদেশ সমস্ত ইস্রায়েলবাসীর জন্য: এই মাসের দশম দিনে প্রত্যেকে তার বাড়ীর জন্য একটি করে পশু জোগাড় করবে| পশুটি একটি মেষ অথবা একটি ছাগলও হতে পারে| যদি তার বাড়ীতে একটি গোটা পশুর মাংস খাওয়ার মতো য়থেষ্ট লোক না থাকে তবে সে তার কিছু প্রতিবেশীকে মাংস ভাগ করে খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করবে| প্রত্যেকের খাওয়ার জন্য যথেষ্ট মাংস থাকবে| পশুটিকে হতে হবে একটি এক বছরের পুংশাবক এবং সম্পূর্ণরূপে স্বাস্থ্য়বান| 4 5 6 মাসের চতুর্দশ দিন পর্য়ন্ত এই পশুটির ওপর তোমাদের নজর রাখতে হবে| সেই দিন ইস্রায়েলীয় মণ্ডলীর সমস্ত লোকরা এই পশুটিকে গোধুলি বেলায হত্যা করবে| 7 তোমরা এই প্রাণীর রক্ত সংগ্রহ করবে, য়ে বাড়ীতে লোকরা ভোজ খাবে সেই বাড়ীর দরজার কাঠামোর ওপরে ও পাশে এই রক্ত লাগিয়ে দেবে| 8 “এই দিন রাতে তোমরা মেষটিকে পুড়িয়ে তার মাংস খাবে| তোমরা তেঁতো শাক ও খামিরবিহীন রুটিও খাবে| 9 মেষটিকে কাঁচা অথবা জলে সিদ্ধ করা অবস্থায় তোমাদের খাওয়া উচিত্ হবে না, কিন্তু আগুনের তাপে সেঁকবে| মেষশাবকটির মাথা, পা এবং ভিতরের অংশ সব কিছুই অক্ষুন্ন থাকবে| 10 তোমরা সব মাংস রাতের মধ্যেই খেযে শেষ করবে| যদি পরদিন সকালে কিছু অবশিষ্ট থাকে তবে তা পুড়িয়ে ফেলবে| 11 “যখন তোমরা আহার করবে তখন তোমরা যাত্রার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে থাকার পোশাকে থাকবে| তোমাদের পায়ে জুতো থাকবে, হাতে ছড়ি থাকবে এবং তোমরা তাড়াহুড়ো করে খাবে| কারণ এ হল প্রভুর নিস্তারপর্ব| 12 “আমি মিশরীয়দের প্রথমজাত শিশুগুলিকে এবং তাদের সমস্ত পশুর প্রথমজাত শাবকগুলিকে হত্যা করব| এইভাবে, আমি মিশরের সমস্ত দেবতাদের ওপর রায দেব যাতে তারা জানতে পারে য়ে আমিই প্রভু| 13 কিন্তু তোমাদের দরজায় লাগানো রক্ত একটি বিশেষ চিহ্নের কাজ করবে| যখন আমি ঐ রক্ত দেখব তখন আমি তোমাদের বাড়ীগুলোর ওপর দিয়ে চলে যাব| আমি শুধু মিশরের লোকদের ক্ষতি করব| এই সব মারাত্মক রোগে তোমাদের কোন ক্ষতি হবে না| 14 “তাই তোমরা সবসময় মনে রাখবে য়ে আজ তোমাদের একটি বিশেষ ছুটির দিন| তোমাদের উত্তরপুরুষরা এই ছুটির দিনের মাধ্যমে প্রভুকে সম্মান জানাবে| 15 এই ছুটিতে তোমরা সাতদিন ধরে খামিরবিহীন রুটি খাবে, ছুটির প্রথম দিনে তোমরা তোমাদের বাড়ী থেকে সমস্ত খামির সরিয়ে ফেলবে| এই ছুটিতে পুরো সাত দিন ধরে কেউ কোন খামির খাবে না| যদি কেউ সেটা খায় তবে সেই ব্যক্তিকে ইস্রায়েলীয়দের থেকে আলাদা করে দেওয়া হবে| 16 এই ছুটির প্রথম ও শেষ দিনে পবিত্র সমাগম অনুষ্ঠিত হবে| তোমরা এই দিনগুলোতে কোন কাজ করবে না| তোমরা এই দিনগুলিতে একমাত্র তোমাদের আহারের জন্য খাদ্য তৈরী করতে পারবে| 17 তোমরা খামিরবিহীন রুটির উত্সবের কথা মনে রাখবে| কেন? কারণ এই দিন আমি তোমাদের সব লোককে দলে দলে মিশর থেকে বের করে এনেছিলাম, তাই তোমাদের সব উত্তরপুরুষ এই দিনটি স্মরণ করবে, এই নিয়ম চিরকাল থাকবে| 18 তাই প্রথম মাসের চতুর্দশ দিন বিকেলে তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাওয়া শুরু করবে| তোমরা ঐ রুটিটি ঐ মাসের একবিংশ দিনের সন্ধ্যা পর্য়ন্ত খাবে| 19 সাতদিন ধরে তোমাদের ঘরে কোন খামির থাকবে না, য়ে কোন ব্যক্তি সে ইস্রায়েলের নাগরিক হোক বা বিদেশী য়ে এই সময় খামির খাবে তাকে ইস্রায়েলের বাকি লোকদের থেকে আলাদা করে দেওয়া হবে| 20 এই ছুটিতে তোমরা অবশ্যই খামির খাবে না, তোমরা যেখানেই থাক না কেন খামিরবিহীন রুটি খাবে|” 21 তাই মোশি ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত প্রবীণদের ডেকে বলল, “তোমাদের পরিবারের জন্য মেষশাবক জোগাড় কর এবং নিস্তারপর্বের জন্য মেষশাবকটিকে হত্যা কর| 22 এক আঁটি করে এসোব নিয়ে পাত্রে রাখা রক্তে ডুবিয়ে তা দিয়ে দরজার কাঠামোর ওপর ও পাশের দিক রঙ করো| সকালের আগে কেউ নিজের বাড়ী ত্যাগ করবে না| 23 এই সময়, প্রভু মিশরের ভেতর দিয়ে মিশরীয়দের হত্যা করতে যাবেন| যখন তিনি দরজার কাঠামোর পাশে ও ওপরে রক্তের প্রলেপ দেখবেন, তখন তিনি সেই দরজাগুলোর ওপর দিয়ে যাবেন| প্রভু ধ্বংসকারীকে তোমাদের বাড়ীতে এসে আঘাত করতে দেবেন না| 24 তোমরা অবশ্যই এই আদেশ মনে রাখবে, এই নিয়ম তোমাদের ও তোমাদের উত্তরপুরুষদের জন্য চিরকাল থাকবে| 25 যখন তোমরা প্রভুর প্রতিশ্রুতি মত তাঁর দেওয়া ভূখণ্ডে যাবে তখন তোমাদের এই জিনিসগুলি অবশ্যই মনে রাখতে হবে| 26 যখন তোমাদের সন্তানরা জিজ্ঞাসা করবে, ‘আমরা কেন এই উত্সব করছি?’ 27 তখন তোমরা বলবে, ‘এই নিস্তারপর্ব প্রভুকে সম্মান জানাবার জন্য| কেন? কারণ যখন আমরা মিশরে ছিলাম তখন প্রভু আমাদের ইস্রায়েলবাসীদের বাড়ীগুলিকে নিস্তার দিয়েছিলেন| প্রভু মিশরীয়দের হত্যা করেছিলেন কিন্তু আমাদের লোকদের বাড়ীগুলো রক্ষা করেছিলেন| সুতরাং লোকে নত হয়ে প্রভুর উপাসনা করল|” 28 প্রভু মোশি ও হারোণকে এই আদেশ দিয়েছিলেন তাই ইস্রায়েলবাসী প্রভুর আদেশমতো কাজ করল| 29 মধ্যরাতে মিশরের সমস্ত প্রথম নবজাতক পুত্রদের প্রভু হত্যা করেছিলেন| ফরৌণের প্রথমজাত পুত্র থেকে জেলের বন্দীর প্রথমজাত পুত্র পর্য়ন্ত| সমস্ত পশুর প্রথমজাত শাবককেও হত্যা করা হল| 30 সেই রাতে মিশরের প্রত্যেক ঘরে কেউ না কেউ মারা গেল| ফরৌণ, তার কর্মচারী ও মিশরের সমস্ত লোক উচ্চস্বরে কান্না শুরু করল| 31 তাই, সেই রাতে ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “উঠে পড়, আমাদের সকলকে ছেড়ে দাও এবং চলে যাও| তুমি ও তোমার ইস্রায়েলের লোকরা যা ইচ্ছা তাই করতে পার| তোমরা য়েমন বলেছিলে, গিয়ে প্রভুর উপাসনা কর| 32 তোমাদের চাহিদা মতো সমস্ত গরু ও মেষের দল তোমরা নিয়ে য়েতে পারো| যাও! যখন তোমরা যাবে আমায আশীর্বাদ করার জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো|” 33 মিশরীয়রা তাদের তাড়াতাড়ি চলে যাবার জন্য মিনতি করল| কেন? কারণ তারা বলল, “তোমরা না চলে গেলে আমরা সকলে মারা যাব!” 34 ইস্রায়েলীয়রা তাদের রুটিতে খামির দেবার সময় পেল না| তারা ভিজে মযদার তালের পাত্র কাপড়ে জড়িয়ে কাঁধে বয়ে নিয়ে চলল| 35 তারপর ইস্রায়েলের লোকরা মোশির কথামতো তাদের মিশরীয় প্রতিবেশীদের কাছে গিয়ে কাপড় ও সোনা রূপার তৈরী জিনিস চাইল| 36 প্রভু মিশরীয়দের ইস্রায়েলীয়দের প্রতি দযালু করে তুললেন যাতে মিশরীয়রা তাদের ধনসইদ ইস্রায়েলবাসীদের হাতে তুলে দেয়! এইভাবে, ইস্রায়েলীয়রা মিশরীয়দের লুন্ঠন করল| 37 ইস্রায়েলের লোকরা রামিষেষ থেকে সুক্কোতে যাত্রা করল| শিশুরা ছাড়াই সেখানে প্রায় 6,00,000 লোক ছিল| 38 সেখানে প্রচুর মেষ, গবাদি পশু এবং জিনিসপত্র ছিল| তাদের সঙ্গে অনেক অ-ইস্রায়েলীয় লোক গিয়েছিল| 39 য়েহেতু তাদের মিশরের বাইরে য়েতে বাধ্য করা হয়েছিল, সেই হেতু তারা মাখা ময়দায়, য়েটা তারা মিশর থেকে এনেছিল, খামির মেশাবার সময় পাযনি| এবং যাত্রার জন্য কোন বিশেষ খাবার প্রস্তুত করারও সময় হয় নি| তাই তারা খামিরবিহীন রুটিই সেঁকে নিয়েছিল| 40 ইস্রায়েলীয়বাসীরা 430 বছর ধরে মিশরে বাস করেছিল| 41 প্রভুর সৈন্যরা430 বছর পর সেই বিশেষ দিনে মিশর ত্যাগ করেছিল| 42 তাই সেটা ছিল একটি বিশেষ রাত্রি কারণ প্রভু তাদের মিশর থেকে বাইরে বের করে আনার জন্য লক্ষ্য রাখছিলেন| সেইভাবে, সমস্ত ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুকে সম্মান জানানোর জন্য চিরকাল এই বিশেষ রাতটির প্রতি লক্ষ্য রাখবে| 43 প্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “এই হল নিস্তারপর্বের বলির নিয়মাবলী: কোন বিদেশী এই নিস্তারপর্বে আহার করবে না| 44 কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি কোন দাস কেনে এবং তাকে সুন্নত্ করায তাহলে সেই দাস নিস্তারপর্ব খেতে পারবে| 45 কিন্তু য়ে লোক তোমার দেশের একজন সাময়িক বাসিন্দা বা ভাড়া করা কর্মী তার নিস্তারপর্ব ভোজ খাওয়া উচিত্ নয়| এই নিস্তারপর্ব শুধুমাত্র ইস্রায়েলের লোকদের জন্য| 46 “প্রত্যেক পরিবার একটি বাড়ীতেই আহার করবে| কোনও খাবার বাড়ীর বাইরে যাবে না, মেষ শাবকের কোন হাড় ভাঙ্গবে না| 47 সমস্ত ইস্রায়েল প্রজাতির মানুষ এই উত্সব পালন করবে| 48 যদি ইস্রায়েলীয় ছাড়া অন্য কোন উপজাতির লোক তোমাদের সঙ্গে থাকে এবং তোমাদের খাবারে ভাগ বসাতে চায় তবে তাকে এবং তার পরিবারের প্রত্যেক পুরুষকে সুন্নত্ করাতে হবে| তাহলে সে অন্যান্য ইস্রায়েলীয়দের সমকক্ষ হয়ে যাবে এবং তাদের সঙ্গে খাবার ভাগ করে খেতে পারবে| কিন্তু যদি কোন ব্যক্তির সুন্নত্ না করানো হয় তবে সে এই খাবার আহার করতে পারবে না| 49 এই নিয়ম সকলের জন্যই প্রযোজ্য| এই নিয়মটি ইস্রায়েলীয় অথবা অ-ইস্রায়েলীয় সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য|” 50 তাই প্রভু মোশি ও হারোণকে যা আদেশ দিয়েছিলেন সমস্ত ইস্রায়েলের লোক তা পালন করল| 51 তাই সেই দিন প্রভু এইভাবে দলে দলে ইস্রায়েলবাসীদের মিশর দেশ থেকে বের করে আনলেন|
1 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের প্রতিটি নারীর প্রথমজাত পুত্র সন্তানকে আমার উদ্দেশ্যে দান কর| এমনকি প্রত্যেকটি পশুর প্রথম পুরুষ শাবকটিও আমার হবে|” 3 মোশি লোকদের বলল, “এই দিনটিকে মনে রেখো| তোমরা মিশরের ক্রীতদাস ছিলে| কিন্তু প্রভু তাঁর মহান শক্তি দিয়ে এই দিনে তোমাদের দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছেন| তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাবে| 4 আজ আবীব মাসের (বসন্তকালের) এই দিনে তোমরা মিশর ত্যাগ করেছ| 5 প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের দেশ তোমাদের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| প্রভু তোমাদের এই বিশাল সম্পদে ভরা শস্য শ্যামল দেশে নিয়ে আসার পর তোমরা অবশ্যই প্রতি বছর প্রথম মাসের এই বিশেষ দিনে উপাসনা করবে| 6 “সাতদিন ধরে তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাবে| সাত দিনের দিন ভোজন উত্সব করবে| এই মহাভোজ উত্সব হবে প্রভুকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে| 7 তাই সাতদিন ধরে তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাবে| তোমাদের দেশের কোথাও কোন খামিরবিশিষ্ট রুটি অবশ্যই থাকবে না| 8 সেইদিন তোমরা তোমাদের সন্তানদের বলবে, ‘প্রভু আমাদের মিশর দেশ থেকে উদ্ধার করে এনেছেন বলে আমরা এই মহাভোজ উত্সব পালন করি|” 9 “এই বিশ্রামের দিনটিকে কোনও বিশেষ দিনে হাতে বাঁধা সুতোর মতো তোমাদের মনে রাখা উচিত্|মনে রাখবে দুই চোখের মাঝখানে কপালে লাগানো তিলকের মতো| এই ছুটির দিনটি তোমাদের প্রভুর শিক্ষামালাকে মনে রাখতে সাহায্য করবে| এটা তোমাদের সাহায্য করবে প্রভুর মহান শক্তিকে মনে রাখতে যিনি তোমাদের মিশর থেকে মুক্ত করেচেন| 10 সুতরাং প্রতি বছর ছুটির দিনটিকে তোমরা প্রতি বছর সঠিক সময় স্মরণ করবে| 11 “তোমাদের পূর্বপুরুষদের এবং তোমাদের কাছে প্রতিশ্রুতি মতো প্রভু তোমাদের কনানীযদের দেশে নিয়ে যাবেন| কিন্তু প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে তোমাদের তিনি এই দেশ দিয়ে দেবেন| ঈশ্বর তোমাদের এই দেশ দেওয়ার পর, 12 তোমরা কিন্তু তাঁকে তোমাদের প্রথম পুত্র সন্তান এবং ভূমিষ্ট হওয়া প্রথম পুরুষ শাবককে প্রভুর উদ্দেশ্যে দান করবে| 13 প্রতিটি গাধার প্রথমজাত পুরুষ শাবককে প্রতিটি মেষ শাবকের বিনিময়ে প্রভুর কাছ থেকে কিনে মুক্ত করে আনতে পারবে| যদি মুক্ত করতে না পারো তাহলে গাধার শাবকটিকে ঘাড় মটকে হত্যা করবে| এবং সেটাই হবে প্রভুর প্রতি নৈবেদ্য| কিন্তু মানুষের প্রথমজাত পুত্র সন্তানদের অবশ্যই প্রভুর কাছ থেকে ফেরত্ নিয়ে আসতে হবে| 14 “ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তানরা জিজ্ঞাসা করবে, তোমরা এগুলো কেন করলে, ‘এগুলোর মানেই বা কি?’ তখন তোমরা বলবে, ‘আমরা মিশরে দাসত্ব করতাম| কিন্তু প্রভুই তাঁর মহান শক্তি প্রয়োগ করে আমাদের মিশর দেশ থেকে উদ্ধার করে এনেছিলেন| 15 মিশরে ফরৌণ ছিলেন ভীষণ জেদী| তিনি কিছুতেই আমাদের মুক্তি দিচ্ছিলেন না| তাই প্রভু তখন সে দেশের প্রত্যেক প্রথমজাত সন্তানদের হত্যা করেছিলেন| প্রভু মানুষ ও পশু উভয়েরই প্রথমজাত পুরুষ সন্তানদের হত্যা করেছিলেন| সেইজন্যই আমরা সমস্ত প্রথমজাত পুং পশুদের প্রভুর কাছে উত্সর্গ করি এবং প্রভুর কাছ থেকে আমাদের প্রথমজাত পুত্র সন্তানদের কিনে নিই|’ 16 এরই চিহ্ন হিসাবে তোমাদের হাতে সুতো বাঁধ! এবং দুই চোখের মাঝখানে তিলক| যাতে তোমরা মনে রাখতে পার য়ে প্রভু তাঁর পরাক্রম শক্তি প্রযোগ করে আমাদের মিশর দেশ থেকে উদ্ধার করে এনেছেন|” 17 ফরৌণ যখন লোকদের চলে য়েতে দিলেন, ঈশ্বর তাদের পলেষ্টীয় দেশের মধ্যে দিয়ে ভূমধ্যসাগর বরাবর সহজ সমুদ্র পথ ব্যবহার করতে দেন নি, যদিও সো রাস্তা ছিল| ঈশ্বর বলেছিলেন, “ঐ দিক দিয়ে গেলে যুদ্ধ করতে হবে| তখন লোকরা মত পরিবর্তন করে আবার মিশরেই ফিরে য়েতে পারে|” 18 তাই ঈশ্বর তাদের সূফ সাগরের দিকবর্তী মরুভূমির মধ্যে দিয়ে নিয়ে এসেছিলেন| মিশর ত্যাগ করার সময় ইস্রায়েলের লোকরা য়ুদ্ধের পোশাকে নিজেদের সজ্জিত করল| 19 মোশি য়োষেফের অস্থি বয়ে নিয়ে চলল| (য়োষেফ মারা যাবার আগে ইস্রায়েলের পুত্রদের এই কাজ করার প্রতিশ্রুতি করিযে নিয়েছিল| য়োষেফ বলেছিল, “ঈশ্বর তোমাদের যখন রক্ষা করবেন তখন তোমরা মিশর দেশ থেকে আমার অস্থি সকল বয়ে নিয়ে এসো|”) 20 ইস্রায়েলীয়রা সুক্কোত্ ছেড়ে এসেছিল এবং এথমে, য়েটা মরুভুমির কাছে ছিল, সেখানে তাঁবু গাড়ল| 21 প্রভু সেই সময় তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে এলেন| সেই যাত্রার সময় প্রভু পথ দেখানোর জন্য দিনের বেলায় লম্বা মেঘ স্তম্ভ এবং রাতের বেলায আগুনের শিখা ব্যবহার করতেন| ঐ আগুনের শিখা রাতের বেলায় তাদের পথ চলার আলো জোগাতো| 22 লম্বা মেঘ স্তম্ভ সারাদিন তাদের সঙ্গে থাকত এবং রাতে থাকত আগুনের শিখা|
1 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ওদের বলো, মিগ্দোল এবং সূফ সাগরের মাঝখানে বাল্সফোনের সামনে রাত্রিযাপন করতে| 3 তাহলে ফরৌণ ভাববে য়ে ইস্রায়েলের লোকরা মরুভূমিতে হারিয়ে গেছে| ওদের আর কোথাও যাবার জায়গা নেই| 4 তখন আমি ফরৌণকে সাহসী করে তুলব যাতে সে তোমাদের তাড়া করে| কিন্তু শেষ পর্য়ন্ত আমি ফরৌণ ও তার সেনাদের পরাজিত করব| এটা আমার সম্মান বাড়াবে| এবং মিশরের লোকরা তখন জানতে পারবে য়ে আমিই প্রভু|” ইস্রায়েলের লোকরা ঈশ্বরের কথামতোই কাজ করল| 5 মিশরের রাজা খবর পেলেন য়ে ইস্রায়েলীয়রা পালিয়েছে| এই খবর শুনে ফরৌণ ও তাঁর সভাসদরা আগের মত মন পরিবর্তন করলেন| ফরৌণ বললেন, “আমরা কেন ইস্রায়েলীয়দের য়েতে দিলাম? কেন ওদের পালাতে দিলাম? এখন আমরা আমাদের ক্রীতদাসদের হারালাম|” 6 সুতরাং ফরৌণ তাঁর রথে চড়ে লোকজন সমেত ফিরে গেলেন| 7 ফরৌণ তাঁর সব চেযে ভালো 600 জন সারথীকে নিলেন| প্রত্যেকটি রথে একজন করে বিশিষ্ট সভাসদ ছিল| 8 ইস্রায়েলীয়রা তাদের যুদ্ধ জয়ে উঁচু করা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছিল| কিন্তু মিশরের রাজা ফরৌণ, য়াঁর হৃদয় প্রভুর দ্বারা উদ্ধত হয়েছিল, ইস্রায়েলীয়দের তাড়া করলেন| 9 মিশরীয় সৈন্যরা তাদের তাড়া করল| ফরৌণের সমস্ত অশ্বারোহী, রথারোহী এবং সৈন্য ইস্রায়েলীয়দের ধরে ফেলল যখন তারা সূফ সাগরের কাছে বাল্সফোনের পূর্বে পী-হহীরোতে শিবির করেছিল| 10 ইস্রায়েলের লোকেরা দেখতে পেল ফরৌণ এবং তাঁর সেনারা তাদের দিকে এগিয়ে আসছে| তখন তারা ভয় পেয়ে প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য চিত্কার করে উঠল| 11 তারা মোশিকে বলল, “কেন তুমি আমাদের মিশর থেকে বের করে আনলে? কেন মরার জন্য তুমি আমাদের এই মরুভূমিতে নিয়ে এলে? আমরা অন্ততঃ মিশরে তো শান্তিতে মরতে পারতাম| সেখানে আর কিছু থাক না থাক প্রচুর কবর ছিল| 12 এরকম য়ে ঘটতে পারে তা কিন্তু আমরা আগেই বলেছিলাম| আমরা বলেছিলাম, ‘অনুগ্রহ করে আমাদের বিরক্ত কোরো না| আমাদের এখানেই থাকতে দাও, মিশরীয়দের সেবা করতে দাও|’ এই মরুভূমিতে এসে মরার থেকে মিশরীয়দের দাসত্ব অনেক ভাল ছিল|” 13 কিন্তু মোশি উত্তরে বলল, “ভয় পেয়ে পালিয়ে য়েও না| দেখো, প্রভু কিভাবে আজ তোমাদের রক্ষা করেন| তোমরা আর কোনও দিন মিশরীয়দের দেখতে পাবে না| 14 তোমাদের কিছুই করতে হবে না| শুধু শান্ত হয়ে দেখে যাও কি ঘটছে| প্রভুই তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করবেন|” 15 সেই সময় প্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি এখনও কেন আমার সামনে কাঁদছো! ইস্রায়েলীয়দের এগিয়ে য়েতে বলো| 16 যখন তুমি সূফ সাগরের ওপর তোমার হাতের লাঠি তুলে ধরবে সূফ সাগর দুভাগ হয়ে যাবে| তখন লোকরা সমুদ্রের মাঝখানে তৈরি হওয়া সেই শুকনো পথ দিয়ে পায়ে হেঁটে য়েতে পারবে| 17 আমিই মিশরীয়দের সাহসী করে তুলেছি| তাই ওরা তোমাদের তাড়া করছে| কিন্তু আমি তোমাদের দেখাব য়ে আমি ফরৌণ, তার সমস্ত সৈন্য, তার অশ্বারোহীসমূহ এবং সারথীদের চেযে অনেক বেশী শক্তিশালী| 18 তখন মিশরও জানবে য়ে আমিই প্রভু| মিশরীয়রাও আমাকে সম্মান জানাবে যখন আমি ফরৌণ, তার অশ্বারোহীগণ এবং সারথীদের পরাজিত করব|” 19 এরপর প্রভুর দূত, য়ে সামনে থেকে ইস্রায়েলীয়দের নেতৃত্ব দিচ্ছিল, সে ইস্রায়েলীয়দের পিছন দিকে চলে এলো| তাই এক লম্বা মেঘস্তম্ভ মুহুর্তের মধ্যেই লোকদের সামনে থেকে পিছনে চলে এল| 20 এইভাবে ঐ মেঘস্তম্ভ মিশরীয়দের মাঝখানে বিরাজ করতে থাকল| তখন মিশরীয়দের জন্য অন্ধকার থাকলেও ইস্রায়েলীয়দের জন্য আলো ছিল| তাই ঐ রাত্রে মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের কাছে আসতে পারল না| 21 মোশি সূফ সাগরের ওপর তার হাত মেলে ধরল| প্রভু পূর্ব দিক থেকে প্রবল ঝড়ের সৃষ্টি করলেন| এই ঝড় সারারাত ধরে চলতে লাগল| দু’ভাগ হয়ে গেল সমুদ্র| এবং বাতাস মাটিকে শুকনো করে দিয়ে সমুদ্রের মাঝখান বরাবর পথের সৃষ্টি করল| 22 ইস্রায়েলের লোকরা ঐ পথ দিয়ে হেঁটে সূফ সাগর পেরিয়ে গেল| তাদের দুদিকে ছিল জলের দেওয়াল| 23 পিছনে ফরৌণের সমস্ত অশ্বারোহী সেনা ও রথ ধাওয়া করল| 24 পরদিন সকালে মেঘস্তম্ভ ও অগ্নিশিখার ওপর থেকে প্রভু মিশরীয় সেনাদের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন| তখন প্রভু ইস্রায়েলীয়দের পক্ষ নিয়ে মিশরীয় সৈন্যবাহিনীকে আতঙ্কে ফেলে দিলেন| 25 রথের চাকা আটকে গিয়ে রথ চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়ালো| মিশরীয়রা চিত্কার করে উঠল, “চলো এখান থেকে বেরিয়ে যাই| প্রভুই ইহুদীদের হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন|” 26 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “সমুদ্রের ওপর তোমার হাত তুলে ধর| দেখবে তীব্র জলোচ্ছ্বাস গ্রাস করছে মিশরীয়দের রথ ও অশ্বারোহী সেনাদের|” 27 মোশি তার হাত সমুদ্রের ওপর মেলে ধরলো| তাই দিনের আলো ফোটার ঠিক আগে সমুদ্র তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেল| মিশরীয়রা জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচার তাগিদে প্রাণপনে দৌড়তে লাগল| কিন্তু প্রভু তাদের সমুদ্রের জলে ঠেলে দিলেন| 28 জলোচ্ছ্বাস গ্রাস করল রথ ও অশ্বারোহী সেনাদের| ফরৌণের য়ে সমস্ত সেনারা ইস্রায়েলীয়দের তাড়া করে আসছিল তারা সব ধ্বংস হল| কেউ বেঁচে থাকল না| 29 ইস্রায়েলের লোকরা সমুদ্রের মাঝখানে তৈরি হওয়া পথ দিয়ে সূফ সাগর পেরিয়ে গেল| তাদের পথের দুপাশে ছিল জলের দেওয়াল| 30 সুতরাং সেইদিন এইভাবে প্রভু মিশরীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করলেন| পরে ইস্রায়েলীয়রা সূফ সাগরের তীরে মিশরীয়দের মৃত দেহের সারি দেখতে পেল| 31 মিশরীয়দের সেই পরিণতি দেখার পর থেকে ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর শক্তি সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হল| তারা প্রভুকে ভয় ও সম্মান করতে শুরু করল| তারা বিশ্বাস করতে শুরু করল প্রভুকে এবং তাঁর দাস মোশিকে|
1 এরপর মোশি এবং ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর উদ্দেশ্যে এই গানটি গাইল:“আমি প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাইব! তিনি মহান কাজ করেছেন| তিনি ঘোড়া এবং ঘোড়সওয়ারদের সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন| 2 প্রভুই আমার শক্তি| তিনি আমার পরিত্রাতা এবং আমি তাঁর প্রশংসার গান গাইব| প্রভু আমার ঈশ্বর, আমি তাঁর প্রশংসা করব| প্রভু হলেন আমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর| এবং আমি তাঁকে সম্মান করব| 3 প্রভু হলেন মহান য়োদ্ধা| তাঁর নাম হল প্রভু| 4 ফরৌণের রথ এবং সেনাদের তিনি সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন| ফরৌণের সেরা সৈন্যরা সূফ সাগরে ডুবে গেছে| 5 জলের গভীরে তারা তলিয়ে গেছে| পাথরের মতো তারা জলে ডুবে গেছে| 6 “প্রভু আপনার ডান হাত অসম্ভব শক্তিশালী| প্রভু আপনার ডান হাত শত্রুবাহিনীকে চুরমার করে দিয়েছে| 7 আপনি আপনার মহান রাজকীয় ঢঙে আপনার বিরুদ্ধাচারীদের ধ্বংস করেছেন| আগুনের শিখা য়েমন করে ঘর পুড়িয়ে দেয়, তেমনি আপনার ক্রোধ তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে| 8 আপনার নিঃশ্বাসের একটি সজোর ফুত্কারে জল জমে উঠেছিল| সেই জলোচ্ছ্বাস একটি নিরেট দেওয়ালে পরিণত হয়েছিল এবং সমুদ্রের গভীরতাও ঘন হয়ে উঠেছিল| 9 শত্রুরা বলেছিল, ‘আমি তাদের তাড়া করে ধরে ফেলব| আমি তাদের সমস্ত ধন-সম্পত্তি লুঠ করব| আমি তরবারি ব্যবহার করে সব লুঠ করে নেব| সবকিছু আমার নিজের জন্য নিয়ে যাব|” 10 কিন্তু আপনি আপনার নিঃশ্বাস দিয়ে সমুদ্রকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং তাদের ঢেকে দিয়েছিলেন| তারা সীসার মতো সেই ক্রুদ্ধ সমুদ্রের নীচে চলে গেছে| 11 প্রভুর মতো আর কোনও ঈশ্বর আছে? না! আপনার মতো আর কোনও ঈশ্বর নেই| আপনি অত্যন্ত পবিত্র| আপনি আশ্চর্য়জনক শক্তিশালী| আপনি মহান অলৌকিক ঘটনা ঘটান| 12 আপনি আপনার ডান হাত প্রসারিত করেছিলেন, তাই পৃথিবী তাদের গিলে ফেলেছিল| 13 আপনি আপনার মহান করুণা দিয়ে লোকদের রক্ষা করেছেন| এবং আপনার শক্তি দিয়ে ঐ লোকদের আপনার পবিত্র ও সুন্দর দেশে আপনি নিয়ে এসেছেন| 14 “অন্যান্য দেশ এই কাহিনী শুনে ভয় পাবে| পলেষ্টীয়রা ভয়ে কেঁপে উঠবে| 15 ইদোমের নেতারা ভয়ে কাঁপবে| মোয়াবের নেতারা ভয়ে কাঁপবে| কনানবাসীরা উদ্যম হারাবে| 16 ঐ শক্তিশালী লোকরা যখন আপনার ক্ষমতার প্রমাণ পাবে তখন তারা ভয় পেয়ে যাবে| ওরা পাথরের মতো অনঢ় হয়ে থাকবে যতক্ষণ না আপনার লোকরা চলে যায: হ্যাঁ, হে প্রভু, যতক্ষণ না আপনার লোক, যাদের আপনি কিনেছিলেন চলে যায়| 17 তাদের আপনার পর্বতে নিয়ে যান যেখানে আপনার বাসস্থান এবং সেখানে তাদের স্থাপন করুন| আমার প্রভু, ঐ জায়গাটাই হচ্ছে সেই জায়গা য়েটা আপনি তৈরী করেছেন| পবিত্র স্থান য়েটাকে আপনার হাত প্রতিষ্ঠা করেছে| 18 প্রভু চিরকালের জন্য যুগে যুগে শাসন করবেন|” 19 যখন ফরৌণের সমস্ত ঘোড়া, রথ ও অশ্বারোহী সমুদ্রের নীচে চলে গেল, তখন প্রভু আবার সমুদ্রের জল তাদের ওপর ফেরত্ আনলেন| কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা সমুদ্রের মাঝখান দিয়ে শুকনো পথে হেঁটে গিয়েছিল| 20 তারপর হারোণের বোন মরিয়ম, মহিলা ভাববাদিনী, হাতে একটি খঞ্জনী তুলে নিল| মরিয়ম ও তার মহিলা সঙ্গীরা নাচতে ও গাইতে শুরু করল| গানের য়ে কথাগুলো মরিয়ম উচ্চারণ করছিল তা হল: 21 “প্রভুর উদ্দেশ্যে গান কর| তিনি মহান কাজ করেছেন| তিনি ঘোড়া এবং ঘোড়াসওযারীদের সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন|” 22 ইস্রায়েলের লোকদের সূফ সাগর পেরোতে মোশি নেতৃত্ব দিয়েছিল| তিন দিন ধরে শূর মরুভূমি অতিক্রম করতে করতে তারা জলের সন্ধান পেল না| 23 তিন দিন পর তারা মারাতে এসে পৌঁছালো| মারাতে জলের সন্ধান মিললেও সেই জল এত তেঁতো ছিল য়ে তা পানের অয়োগ্য| (এরজন্য এই জায়গার নাম রাখা হয়েছিল মারা বা তিক্ততা|) 24 লোকরা মোশির কাছে এসে নালিশ জানালো| তারা বলল, “এখন আমরা কি পান করব?” 25 মোশি প্রভুর কাছে কেঁদে পড়ল| প্রভু তাকে এক গাছের সন্ধান দিলেন| মোশি সেই গাছ ঐ তেঁতো জলে ডুবোতেই সেই জল সুস্বাদু হয়ে উঠল|ঐ স্থানে প্রভু লোকদের বিচার করে তাদের জন্য একটি আইন প্রণযনও করেছিলেন| প্রভু তাদের বিশ্বাসেরও পরীক্ষা নিলেন| 26 প্রভু বললেন, “তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে মেনে চলবে| তিনি য়েটা সঠিক মনে করবেন সেটাই তোমরা করবে| তোমরা যদি প্রভুর সমস্ত নির্দেশ ও বিধি মেনে চলো তাহলে তোমরা মিশরীয়দের মতো অসুস্থ থাকবে না| আমি প্রভু, তোমাদের মিশরীয়দের মতো অসুস্থ করে তুলব না| আমিই সেই প্রভু যিনি তোমাদের আরোগ্য দান করেছেন|” 27 তারপর লোকরা এলীমে এসে উপস্থিত হল| সেখানে বারোটি জলের ঝর্ণা এবং 70টি তাল গাছ ছিল| তারা সেই জায়গায় জলের ধারে তাদের শিবির তৈরি করল|
1 তারপর ইস্রায়েলের সমস্ত জনমণ্ডলী এলীম ছেড়ে গেল এবং সীনয় মরুভূমিতে এলো য়েটা ছিল এলীম ও সীনয়ের মাঝখানে| মিশর দেশ ছেড়ে আসার দ্বিতীয মাসের 15 দিনের মাথায় তারা সেখানে পৌঁছলো| 2 তারপর ইস্রায়েলের সমস্ত জনমণ্ডলী মরুভূমিতে মোশি ও হারোণের কাছে নালিশ করল| 3 এইসব লোকরা বলল, “প্রভু যদি আমাদের মিশর দেশে মেরে ফেলতেন তাহলেও ভাল ছিল| অন্ততঃ সেখানে তো খাবার পেতাম| আমাদের ইচ্ছামতো খাবার সেখানে মজুত ছিল| কিন্তু এখন তোমরা আমাদের এই মরুভূমিতে এনে ফেললে| এখানে তো আমরা খাবারের অভাবেই মারা যাব|” 4 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “আমি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে খাবার ফেলবার ব্যবস্থা করব| সেই খাবার তোমাদের খাবার য়োগ্য হবে| লোকরা প্রতিদিন বাইরে বেরিয়ে এসে তাদের প্রযোজনমতো সারাদিনের খাবার কুড়িয়ে নিয়ে আসবে| আমি যা বলছি তোমরা তা করছ কিনা শুধু তা দেখার জন্যই আমি এটা করব| 5 প্রত্যেকদিন তারা কেবলমাত্র একদিনের মতো পর্য়াপ্ত খাবার সংগ্রহ করবে| কিন্তু শুক্রবার যখন তারা খাবার তৈরি করবে, তখন তারা দেখবে য়ে দুদিনের মত পর্য়াপ্ত খাবার সঞ্চিত আছে|” 6 মোশি এবং হারোণ ইস্রায়েলের লোকদের বলল, “রাতে তোমরা প্রভুর শক্তির প্রমাণ পাবে| তোমরা জানবে য়ে তিনিই তোমাদের মিশর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছেন| 7 তোমরা প্রভুর কাছে নালিশ জানিয়েছো এবং তিনি তা শুনেছেন| তাই আগামীকাল সকালে তোমরা প্রভুর মহিমা স্বচক্ষে দেখতে পাবে| তোমরা আমাদের কাছে কেবল নালিশই জানিয়ে যাচ্ছ| এখন কি আমরা খানিকটা বিশ্রাম পেতে পারি?” 8 এবং মোশি বলল, “তোমরা নালিশ জানিয়েছ এবং প্রভু তোমাদের অভিযোগ শুনেছেন| তাই আজ রাতে প্রভু তোমাদের মাংস দেবেন| এবং কাল সকালের মধ্যে তোমরা তোমাদের চাহিদা মতো রুটিও পেয়ে যাবে| তোমরা আমার কাছে এবং হারোণের কাছেও নালিশ জানিয়ে এসেছ| কিন্তু আমরা এখন দুজনে কিছু সমযের জন্য বিশ্রাম নিতে পারব বলে মনে হয়| মনে রেখো, তোমরা আমার বিরুদ্ধে কিংবা হারোণের বিরুদ্ধে নালিশ জানাও নি, তোমরা বয়ং প্রভুর বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছ|” 9 তারপর মোশি হারোণকে বলল, “ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের বলো, ‘প্রভুর সামনে উপস্থিত হতে|’ কারণ প্রভু তোমাদের নালিশ শুনেছেন|”‘ 10 হারোণ ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের সে কথা বলল| তখন তারা সবাই একসঙ্গে এক জায়গায় এসে জড়ো হল| হারোণ যখন সবার সঙ্গে কথা বলছিল তখন সবাই পিছন ফিরে মরুভূমির দিকে তাকিয়ে দেখতে থাকল মেঘের ভিতর দিয়ে প্রভুর মহিমা প্রকাশিত হচ্ছে| 11 প্রভু মোশিকে বললেন, 12 “আমি ইস্রায়েলের লোকদের নালিশ শুনেছি| সুতরাং ওদের বলো, ‘আজ রাতে তোমরা মাংস খেতে পারো এবং সকালে তোমরা যতখুশি রুটি খেতে পারো| তখন তোমরা বুঝবে য়ে তোমরা তোমাদের প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, বিশ্বাস করতে পার|” 13 রাতে, তিতির পাখীরা এসেছিল এবং শিবিরের চারপাশে বসেছিল| লোকরা সেই পাখীগুলোকে ধরে তার মাংস খেল| সকালে শিবিরের চারপাশে শিশির পড়েছিল| 14 শিশির শুকিয়ে গেলে তুষার কণার সরু স্তরের মতো একটি বস্তু মাটিতে পড়ে থাকল| 15 তা দেখে ইস্রায়েলবাসীরা একে অপরকে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করল, “এটা আবার কি জিনিস?”তারা জানত না সেটা কি| তাই তারা একে অপরকে কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞাসা করছিল| তখন মোশি তাদের বলল, “এটা এক ধরণের খাদ্যবস্তু যা প্রভু তোমাদের খাবার জন্য দিয়েছেন| 16 প্রভু বলেছেন, ‘প্রত্যেকেই তার প্রয়োজন মতো এটা কুড়িযে নেবে| এবং প্রত্যেককে তার পরিবারের প্রত্যেকের জন্য অন্ততঃ দু’পোযা করে নিতে হবে|”‘ 17 একথা শুনে ইস্রায়েলবাসীরা প্রত্যেকে ঐ খাদ্যবস্তু কুড়িয়ে নিল, কেউ কেউ আবার অন্যদের থেকে বেশী কুড়ালো| 18 পরে ওজনে দেখা গেল য়ে যারা বেশী সংগ্রহ করেছিল তাদের কাছে অতিরিক্ত পরিমাণ ছিল না এবং যারা কম সংগ্রহ করতে পেরেছিল তাদেরও খাবারে কম পড়ে নি| প্রত্যেকের পরিবারই পর্য়াপ্ত পরিমাণে খাবার পেল| 19 মোশি তাদের বলল, “পরের দিনের জন্য ঐ খাবার মজুত করে রেখো না|” 20 কিন্তু কয়েকজন মোশির কথা না শুনে পরের দিনের জন্য ঐ খাবার রেখে দিল| কিন্তু মজুত করা খাবারগুলোয় পোকা ধরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে গেল| তাই মোশি ঐসব লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ হল| 21 প্রতিদিন সকালে প্রত্যেকে ঐ খাবার পর্য়াপ্ত পরিমাণে জমা করত| কিন্তু দুপুরের মধ্যে ঐ খাদ্যবস্তু গলে উধাও হয়ে য়েত| 22 শুক্রবারে লোকগুলো দ্বিগুণ খাবার জমা করত| তারা মাথা পিছু দু’পোয়া করে খাবার জমা করত| তাই দেখে বিভিন্ন দলের নেতারা এসে মোশিকে তা জানাল| 23 মোশি তখন তাদের বলল, “প্রভুই ওদের বলেছিলেন এটা করতে| কারণ আগামীকাল হল প্রভুকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য বিশেষ বিশ্রামের দিন| তোমরা আজ সব খাবার রান্না করে আজকে খাবার পরে অবশিষ্ট খাবার কালকের জন্য মজুত করে রাখতে পারো|” 24 মোশির আদেশমত, লোকরা সেদিনকার অতিরিক্ত খাবার পরের দিনের জন্য সঞ্চয় করে রেখে দিল| কিন্তু ঐ খাবার এতটুকু নষ্ট হল না| তার মধ্যে একটাও পোকা ছিল না| 25 শনিবার মোশি লোকদের বলল, “আজ হল প্রভুর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য বিশেষ বিশ্রামের দিন| তাই আজ আর কেউ তোমরা মাঠে যাবে না| গতকালের মজুত করা খাবার আজ খাবে| 26 সপ্তাহের বাকি ছয় দিন খাবার সংগ্রহ করলেও প্রতি সাত দিনের দিন হবে বিশ্রামের দিন| তাই বিশ্রামের দিনে মাঠে কোনও খাবার পাওয়া যাবে না|” 27 একথা বলা সত্ত্বেও শনিবার কয়েকজন খাবারের সন্ধানে বাইরে গেল| কিন্তু দেখল কোনও খাবার মাঠে পড়ে নেই| 28 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “আর কতদিন এই লোকরা আমার নির্দেশ ও শিক্ষাকে অমান্য করবে? 29 দেখ, প্রভু এই বিশ্রামের দিনটি তোমাদের অবসরের জন্য নির্দিষ্ট করেছেন| তাই প্রভু শুক্রবার তোমাদের দুদিনের জন্য পর্য়াপ্ত খাবার দিয়ে দেন| সুতরাং য়ে যেখানেই থাকো না কেন শনিবার বিশ্রামের দিনে তোমরা সকলে বিশ্রাম নেবে ও আরাম করবে|” 30 তাই লোকজন প্রভুর কথামতো বিশ্রামের দিনে আরাম করতে লাগল| 31 ইস্রায়েলের লোকেরা ঐ খাদ্যবস্তুর নাম দিল “মান্না|” মান্নাকে দেখতে সাদা রঙের ধনে বীজের মতো হলেও এর স্বাদ অনেকটা মধু দিয়ে তৈরী করা পিঠের মতো| 32 মোশি বলল, “প্রভু বলেছেন: “পরবর্তী উত্তরপুরুষের জন্য তোমাদের দু’পোয়া করে মান্না সঞ্চয় করে রাখতে হবে| তাহলে পরে তারা দেখতে পাবে এই বিশেষ খাবার যা আমি তোমাদের মিশর দেশ থেকে উদ্ধার করে এনে মরুভূমিতে দিয়েছি|”‘ 33 তাই মোশি হারোণকে বলল, “একটা পাত্র নাও এবং তাতে দু’পোয়া মান্না রাখো| প্রভুর সামনে আমাদের উত্তর পুরুষদের জন্য এই মান্না রাখো|” 34 মোশির প্রতি প্রভুর নির্দেশ মতো হারোণ একটি পাত্রে মান্না ভরল এবং সাক্ষ্য সিন্দুকের ভেতর রাখল| 35 ইস্রায়েলীয়রা 40 বছর ধরে মান্না খেযেছিল| কনান দেশের সীমান্তে এসে না পৌঁছানো পর্য়ন্ত তারা মান্না খেযেছিল| 36 (মান্না মাপা হত পোযা হিসেবে| এক পোযা হল 8 কাপের সমান|)
1 সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা একসঙ্গে সীন মরুভূমি থেকে তাদের যাত্রা শুরু করল| প্রভু য়েমনভাবে তাদের নেতৃত্ব দিলেন তারা সেইভাবে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় য়েতে শুরু করল| ঘুরতে ঘুরতে তারা রফীদীমে গিয়ে শিবির স্থাপন করল| সেখানে কোনও পানীয় জল ছিল না| 2 তাই ঐসব লোকরা আবার মোশির সঙ্গে তর্ক শুরু করল এবং বলল, “আমাদের পানীয় জল দাও|”মোশি তাদের বলল, “তোমরা কেন আমার বিরোধিতা করছো? কেনই বা তোমরা প্রভুকে পরীক্ষা করছো?” 3 কিন্তু লোকরা তখন প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত ছিল| তাই তারা পুনরায় মোশির কাছে নালিশ জানাতে শুরু করল| তারা বলল, “কেন তুমি আমাদের মিশর থেকে বের করে আনলে? তুমি কি আমাদের, আমাদের সন্তানদের এবং গবাদি পশুদের পানীয় জলের অভাবে মারার জন্য মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছো?” 4 তারপর মোশি প্রভুর কাছে কেঁদে পড়ল এবং বলল, “আমি এদের নিয়ে কি করি? যদি এখুনি কিছু না করা যায তাহলে এরা তো সত্যি সত্যি আমাকে পাথর দিয়ে মেরে ফেলবে|” 5 প্রভু মোশিকে বললেন, “কিছু প্রবীণ নেতাদের নিয়ে ইস্রায়েলের লোকের সামনে গিয়ে দাঁড়াও| সঙ্গে তোমার পথ চলার লাঠিকেও নেবে য়ে লাঠি দিয়ে তুমি নীল নদে আঘাত করেছিলে| 6 আমি তোমার সামনে হোরেব পর্বতের (সীনয় পর্বত) ওপর দাঁড়াব| পথ চলার লাঠি দিয়ে ঐ পাথরে আঘাত করো আর তখনই দেখবে পাথর থেকে জল বেরিয়ে আসছে| ঐ জল লোকরা পান করতে পারবে|”মোশি তাই করল এবং ইস্রায়েলের প্রবীণ নেতারাও তা স্বচক্ষে দেখতে পেল| 7 মোশি ঐ স্থানের নাম দিল মঃসা ও মরীবা, কারণ ঐ স্থানেই ইস্রায়েলের লোকরা তার বিরোধিতা এবং ঈশ্বরের পরীক্ষা নিয়েছিল| লোকজন চেযেছিল প্রভু তাদের সঙ্গে আছেন কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে| 8 সেই সময় অমালেক গোষ্ঠীর লোকরা এল এবং রফীদীমে ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে দিল| 9 তখন মোশি যিহোশূয়কে বলল, “কিছু লোককে বেছে নিয়ে আগামীকাল থেকে অমালেকদের সঙ্গে যুদ্ধ করো| আমি তোমাকে পথ চলার লাঠি য়েটাতে ঈশ্বরের পরাক্রম বিদ্যমান, সেইটা নিয়ে পাহাড়ের ওপর থেকে লক্ষ্য করব|” 10 পরদিন যিহোশূয় মোশির আদেশ মেনে যুদ্ধ করতে গেল| একই সমযে মোশি, হারোণ এবং হূর পাহাড়ের চূড়ায় উঠল| 11 যতক্ষণ পর্য়ন্ত মোশি তার হাত তুলে রইল, ইস্রায়েলীয়রা যুদ্ধ জিতছিল, যখন সে তার হাত নামিয়েছিল তখন তারা হেরে যাচ্ছিল| 12 কিছু সময় পরে হাত তুলে থাকতে থাকতে মোশি ক্লান্ত হয়ে উঠল| তখন হারোণ ও হূর একটা বিশাল পাথরে মোশিকে বসিযে তারা উভয়ে মোশির দুদিকে গিয়ে তার হাত তুলে ধরল| সূর্য় না ডোবা পর্য়ন্ত তারা এইভাবেই মোশির হাত দুটোকে তুলে ধরে রইল| 13 আর যিহোশূয় অমালেকদের যুদ্ধে পরাজিত করল| 14 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “এই যুদ্ধ নিয়ে একটা বই লেখ যাতে লোকরা মনে রাখে এখানে কি ঘটেছিল এবং য়িহোশূযের কাছে এটা জোরে পড়ে শোনাও যাতে সে জানতে পারে য়ে আমি অমালেকদের এই পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দেব|” 15 এরপর মোশি একটি বেদী তৈরী করল| সেই বেদীর নাম হল “প্রভুই আমার পতাকা|” 16 মোশি বলল, “আমি প্রভুর সিংহাসনের দিকে হাত বাড়িযে ছিলাম বলেই প্রভু অমালেকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, য়েমন তিনি সর্বদা করেন|”
1 মোশির শ্বশুর যিথ্রো ছিল মিদিয়নীয়র যাজক| ঈশ্বর য়ে একাধিকভাবে মোশিকে এবং ইস্রায়েলের লোকদের সাহায্য করেছেন তা সে শুনেছিল| য়িথ্রো শুনেছিল য়ে প্রভু ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বের করে এনেছেন| 2 তাই য়িথ্রো মোশির স্ত্রী সিপ্পোরাকে নিল এবং মোশির সঙ্গে দেখা করতে গেল| মোশি তখন ঈশ্বরের পর্বতের কাছে শিবির করে রযেছে| মোশির স্ত্রী সিপপোরা তখন বাপের বাড়ীতে থাকত কারণ মোশিই তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছিল| 3 যিথ্রো তার সঙ্গে শুধু মোশির স্ত্রীকেই নয়, মোশির দুই পুত্রকেও নিয়ে গিয়েছিল| প্রথম পুত্রের নাম গের্শোন কারণ সে যখন জন্মায় তখন মোশি বলেছিল, “আমি পরদেশে প্রবাসী|” 4 দ্বিতীয পুত্রের নাম ইলীয়েষর| নামকরণের কারণ হিসেবে দ্বিতীয় পুত্রের জন্মের সময় মোশি বলেছিল, “আমার পিতার ঈশ্বর, আমাকে সাহায্য করেছেন এবং ফরৌণের তরবারি থেকে রক্ষা করেছেন|” 5 য়িথ্রো মোশির স্ত্রী ও দুই পুত্রকে নিয়ে মোশির শিবিরে পৌঁছালো| মোশি তখন ঈশ্বরের পর্বতের কাছে মরুভূমিতে শিবিরে ছিল| 6 যিথ্রো মোশির উদ্দেশ্যে একটি বার্তায় বলে পাঠাল, “আমি তোমার শ্বশুর যিথ্রো| আমি তোমার স্ত্রী ও দুই পুত্রকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি|” 7 তখন মোশি তাঁবু থেকে বেরিয়ে এসে শ্বশুরকে হাঁটু গেড়ে প্রণাম ও চুম্বন করল| দুজনে দুজনের শরীর ও স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিয়ে মোশির তাঁবুতে প্রবেশ করল| 8 ইস্রায়েলের লোকদের জন্য প্রভু যা যা করেছেন মোশি তা বিস্তারিতভাবে যিথ্রোকে বলল| মোশি জানাল, প্রভু ফরৌণ ও মিশরের লোকদের কি অবস্থা করেছেন| যাত্রাপথে য়ে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল সে সমস্ত সমস্যার কথাও সে বলল| প্রত্যেকটি সমস্যার ক্ষেত্রে প্রভু কিভাবে ইস্রায়েলের লোকদের রক্ষা করেছেন তাও সে শ্বশুরকে খুলে বলল| 9 মিশরীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলীয়দের উদ্ধার করবার সময় প্রভু তাদের জন্য য়ে সমস্ত ভাল কাজগুলি করেছিলেন সে সম্বন্ধে শুনে য়িথ্রো খুশী হল| 10 য়িথ্রো বলল,“প্রভুর প্রশংসা করো! তিনিই তোমাদের মিশরীয়দের কবল থেকে মুক্ত করেছেন| ফরৌণের হাত থেকেও প্রভু তোমাদের রক্ষা করেছেন| 11 এখন আমি জানি সকল দেবতার থেকে প্রভুই মহান! তারা ভাবত তারাই একমাত্র ক্ষমতার অধিকারী কিন্তু দেখ ঈশ্বর কি করে দেখালেন!” 12 মোশির শ্বশুর যিথ্রো ঈশ্বরের প্রতি সম্মানার্থে নৈবেদ্য ও বলি দিল| তখন হারোণ ও ইস্রায়েলের অন্যান্য প্রবীণ নেতারা এসে ঈশ্বরের সামনে মোশি ও য়িথ্রোর সঙ্গে একসঙ্গে আহার করল| 13 পরদিন মোশি লোকদের বিচার করতে বসল| বিচার সভায় এত লোক হয়েছিল য়ে সবাইকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হল| 14 মোশিকে লোকদের বিচার করতে দেখে য়িথ্রো তাকে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কেন একা বিচারকের দায়িত্ব পালন করছো? এবং সবাই সারাদিন ধরে কেনই বা শুধু তোমার কাছেই আসছে?” 15 তখন মোশি তার শ্বশুরকে বলল, “লোকরা আমার কাছে ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত জানতে আসে| 16 যখন মানুষদের মধ্যে কোন বিবাদ তৈরী হয় তখন তারা আমার কাছে আসে| আমিই ঠিক করে দিই কে সঠিক আর কে বেঠিক| এই উপায়ে আমি মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের বিধি ও শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিই|” 17 কিন্তু মোশির শ্বশুর তাকে বলল, “এটাই ঐ কাজের সঠিক উপায় নয়| 18 এটা তোমার একার কাজ নয়| তুমি একা এই কাজ করতে পারবে না| এভাবে তুমিও উদ্যম হারাবে এবং লোকরাও ক্লান্ত হয়ে পড়বে! 19 এখন মন দিয়ে আমার কথা শোন| আমার কিছু উপদেশ গ্রহণ করো| এবং আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বর য়েন সর্বদা তোমার সঙ্গে থাকেন| তুমি সর্বদা লোকদের সমস্যা শুনে যাবে এবং সেগুলো নিয়ে তুমি সর্বদা ঈশ্বরের কাছে বলবে| 20 তুমি ঈশ্বরের বিধি ও শিক্ষামালাকে লোকদের মধ্যে জাগিয়ে তুলবে| তাদের বলবে তারা য়েন ঈশ্বর প্রদত্ত বিধিকে না ভাঙ্গে| তাদের বলবে সঠিক পথে চলতে| তাদের কি করা উচিত্ তাও বলে দেবে| 21 কিন্তু তোমাকে কিছু মানুষকে বিচারক হিসাবে এবং নেতা হিসেবে নির্বাচন করতে হবে|“কিছু ভাল মানুষ যাদের তুমি বিশ্বাস করতে পারো তাদের নির্বাচন করো - তারা ঈশ্বরকে সম্মান করবে| তাদেরই নির্বাচন করবে যারা অর্থের জন্য নিজেদের সিদ্ধান্ত বদল করবে না এবং এদের মানুষদের শাসক হিসাবে তৈরি করো| 1,000 জন প্রতি, 100 জন প্রতি, 50 জন প্রতি এবং 10 জন প্রতি শাসক মনোনীত করো| 22 এবার ঐ লোকেদের শাসনের ভার এই শাসকদের হাতে ছেড়ে দাও| যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ মামলা থাকে তাহলে সেই শাসকরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তোমার কাছে আসবে| কিন্তু সাধারণ মামলার সিদ্ধান্তগুলি অবশ্য তারা নিজেরাই করে নেবে| এইভাবে তোমার বেশ কিছু কাজের ভার তারা বহন করবে এবং তার ফলে লোকদের নেতৃত্ব দিতে তোমারও সুবিধা হবে| 23 যদি তুমি এভাবে এগোতে পারো, আর ঈশ্বর যদি চান তাহলে তুমি তোমার দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে এবং একইভাবে লোকরাও তাদের সমস্যার সমাধান করে ঘরে ফিরে য়েতে পারবে|” 24 যিথ্রো যা বলল মোশি তাই করল| 25 ইস্রায়েলের লোকদের থেকে কিছু ভাল লোককে সে মনোনীত করল| তারপর সে তাদের নেতা হিসেবে তুলে ধরল| মোশি প্রতি 1,000 জনের জন্য, প্রতি 100 জনের জন্য, প্রতি 50 জনের জন্য, এবং প্রতি 10 জনের জন্য শাসক নিযুক্ত করল| 26 এরপর থেকে সেই প্রধানরাই সাধারণ লোকদের শাসন করতে শুরু করল| লোকদের মধ্যে বিবাদ দেখা দিলে তারা নিজের নিজের অঞ্চলের নির্দিষ্ট প্রধানের কাছে য়েতে লাগল সমস্যা সমাধানের জন্য| কেবলমাত্র গুরুত্বপূর্ণ কোন সমস্যা বা মামলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হত মোশিকে| 27 কিছুদিন পর মোশি তার শ্বশুর যিথ্রোকে বিদায় জানাল এবং যিথ্রো তার দেশে ফিরে গেল|
1 মিশর ছেড়ে এসে যখন ইস্রায়েলেরে লোকরা ভ্রমণ করছিল তখন সেই ভ্রাম্যমান অবস্থার তৃতীয় মাসে ইস্রায়েলের লোকরা সীনয় মরুভূমিতে পৌঁছোল| 2 তারা রফীদীম থেকে সীনয় পর্য়ন্ত ভ্রমণ করেছিল এবং পর্বতের কাছে তাঁবু ফেলেছিল| 3 তারপর মোশি পর্বতে উঠল ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করার উদ্দেশ্যে| সেই পর্বতে ঈশ্বর মোশিকে ডেকে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকজন ও মহান যাকোব পরিবারের লোকজনকে একথাগুলি বলো: 4 তোমরা নিজেরাই দেখেছ আমি মিশরীয়দের কি অবস্থা করেছি| তোমরা দেখেছো আমি কিভাবে ঈগল পাখীর মতো মিশর থেকে তোমাদের বের করে আমার কাছে এখানে নিয়ে এসেছি| 5 তাই এখন আমি তোমাদের আমার নির্দেশগুলো মেনে চলতে বলছি| আমার চুক্তি পালন করো| তোমরা যদি তা করো তাহলে তোমরা হবে আমার বিশেষ লোক| এই পুরো পৃথিবীটাই আমার; কিন্তু আমি তোমাদের আমার বিশেষ লোক হিসেবে মনোনীত করেছি| 6 তোমরা যাজকদের একটি বিশেষ রাজ্য় হবে| মোশি তুমি কিন্তু আমি যা বলেছি তা ইস্রায়েলের লোকেদের অবশ্যই বলবে|” 7 তাই মোশি আবার পর্বত থেকে নীচে নেমে এসে ইস্রায়েলের প্রবীণ লোকদের প্রভুর সমস্ত নির্দেশ জানাল| 8 তারা সবাই সমস্বরে জানাল, “প্রভুর সব কথা আমরা মেনে চলব|”তখন মোশি প্রভুকে বলল য়ে প্রত্যেকেই তাঁকে মেনে চলবে| 9 এবং প্রভু মোশিকে বললেন, “ঘন মেঘের মধ্যে দিয়ে আমি তোমার কাছে আসব এবং তোমার সঙ্গে কথা বলব| এবং তোমার সঙ্গে আমার বাক্যলাপ প্রত্যেকটি লোক শুনতে পাবে| লোকদের কাছে তোমার বিশ্বাসয়োগ্যতা বাড়ানোর জন্যই আমি এই উপায়ে তোমার সঙ্গে কথা বলব|”তখন মোশি লোকদের যাবতীয় বক্তব্য ঈশ্বরকে জানাল| 10 এবং প্রভু মোশিকে বললেন, “আজ এবং আগামীকাল তুমি একটা বিশেষ সভার জন্য লোকদের প্রস্তুত করো| তাদের অবশ্যই তাদের পোশাক ধুয়ে নিতে হবে| 11 এবং তৃতীয় দিনে আমার জন্য তৈরী থাকতে হবে| তৃতীয় দিনে আমি সীনয় পর্বত থেকে নীচে নেমে আসব এবং প্রত্যেকটি মানুষ আমার দর্শন পাবে| 12 কিন্তু তুমি প্রত্যেককে বলবে পর্বত থেকে দূরে সরে থাকতে| একটি রেখা টেনে সেই রেখা ওদের পার হতে বারণ করবে| কোন লোক বা প্রাণী যদি পর্বতকে স্পর্শ করে তাহলে তার মৃত্য়ু হবে| তাকে অবশ্যই পাথর দিয়ে অথবা তীর বিদ্ধ করে মেরে ফেলতে হবে| তাকে কেউ ছোঁবে না| শিঙা বেজে না ওঠা পর্য়ন্ত প্রত্যেকে অপেক্ষা করবে| তারপর তারা পর্বতে উঠতে পারবে|” 13 14 সুতরাং মোশি পর্বত থেকে নীচে নেমে এসে লোকদের বিশেষ সভার জন্য প্রস্তুত করল| লোকরা তাদের পোশাক পরিষ্কার করে নিল| 15 তখন মোশি লোকদের বলল, “তৃতীয় দিনে ঈশ্বরের সঙ্গে বিশেষ সভার জন্য প্রস্তুত হও| ঐদিন পর্য়ন্ত কোন পুরুষ নারীকে স্পর্শ করবে না|” 16 তৃতীয় দিন সকালে, পর্বতের চূড়া থেকে ঘন মেঘ নীচে নেমে এল| মেঘ গর্জন ও বিদ্য়ুত্ রেখায় উচ্চস্বরে শিঙা বেজে উঠল| শিবিরের প্রত্যেকে ভয় পেয়ে গেল| 17 তখন মোশি সবাইকে শিবির থেকে বের করে পর্বতের কাছে ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নিয়ে এল| 18 সীনয় পর্বত ধোঁয়ায ঢেকে গেল| চূল্লীর মতো ধোঁয়া পাকিযে পাকিযে ওপরে উঠতে লাগল| সমস্ত পর্বত কাঁপতে শুরু করল| আগুনের শিখায় প্রভু পর্বত থেকে নীচে নেমে এলেন বলেই এই ঘটনা ঘটল| 19 শিঙার শব্দ ক্রমশঃ জোরালো হতে থাকল| মোশি যতবার ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলল ততবারই বজ্রের মতো কঠিন স্বরে ঈশ্বর উত্তর দিতে থাকলেন| 20 প্রভু সীনয় পর্বতে নেমে এলেন| এরপর প্রভু মোশিকে পর্বত শৃঙ্গে তাঁর কাছে য়েতে বললেন| তখন মোশি পর্বতে চড়ল| 21 প্রভু মোশিকে বললেন, “নীচে গিয়ে লোকদের বলো ওরা য়েন আমার কাছে না আসে| আমাকে য়েন না দেখে| যদি তা করে তাহলে অনেকে মারা পড়বে| 22 আর য়ে সকল যাজক আমার কাছে আসবে তাদের বলো তারা য়েন এই বিশেষ সভার জন্য নিজেদের তৈরি করে আসে| যদি তারা তা না করে তাহলে আমি তাদের শাস্তি দেব|” 23 মোশি প্রভুকে বলল, “কিন্তু লোকে পর্বতে চড়তে পারবে না| কারণ আপনিই তো বলেছিলেন একটি রেখা টানতে এবং সেই রেখা লঙঘন করে কেউ য়েন পবিত্র ভূমিতে না আসে|” 24 প্রভু তাকে বললেন, “নীচে মানুষের কাছে যাও| গিয়ে হারোণকে তোমার সঙ্গে নিয়ে এসো| কিন্তু কোন সাধারণ মানুষ ও যাজককে আমার কাছে আসতে দিও না| যদি তারা আমার খুব কাছে আসে তাহলে আমি তাদের শাস্তি দেব|” 25 সুতরাং মোশি লোকদের এই কথাগুলি বলার জন্য নীচে নামল|
1 তখন ঈশ্বর এই সব কথা বললেন: 2 “আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর| আমিই তোমাদের মিশরের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছি| তাই তোমরা এই নির্দেশগুলি মানবে: 3 “আমাকে ছাড়া তোমরা আর কোনও দেবতাকে উপাসনা করবে না| 4 “তোমরা অবশ্যই অন্য কোন মূর্তি গড়বে না য়েগুলো আকাশের, ভূমির অথবা জলের নীচের কোন প্রাণীর মত দেখতে| 5 কোন মূর্ত্তির উপাসনা বা সেবা করবে না| কারণ, আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর| যারা অন্য দেবতার উপাসনা করবে তাদের আমি ঘৃণা করি| আমার বিরুদ্ধে যারা পাপ করবে তারা আমার শত্রুতে পরিণত হবে| এবং আমি তাদের শাস্তি দেব| আমি তাদের সন্তানসন্ততি এবং পরবর্তী প্রজন্মকেও শাস্তি দেব| 6 কিন্তু যারা আমায ভালবাসবে ও আমার নির্দেশ মান্য করবে তাদের প্রতি আমি সর্বদা দযালু থাকব| আমি তাদের হাজার প্রজন্ম পর্য়ন্ত দযা প্রদর্শন করব|” 7 “তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের নাম ভুল ভাবে ব্যবহার করবে না| যদি কেউ তা করে তাহলে সে দোষী এবং প্রভু তাকে নির্দোষ সাব্যস্ত করবেন না| 8 “বিশ্রামের দিনটিকে বিশেষ দিন হিসাবে মনে রাখবে| 9 সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করো| 10 কিন্তু সপ্তমদিনটি হবে অবসরের| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি সম্মান প্রর্দশনের দিন| সুতরাং সেই দিনে কেউ কাজ করবে না-তুমি নয়, অথবা তোমার ছেলেরা এবং মেয়েরা, অথবা তোমার স্ত্রী, অথবা তোমার ক্রীতদাস-দাসীরা কেউ নয়| এমনকি তোমাদের গৃহপালিত পশু এবং তোমাদের শহরে বাস করা বিদেশীরাও বিশ্রামের দিনে কোন কাজ করবে না| 11 কারণ প্রভু সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করে এই আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র এবং এর মধ্যস্থিত সব কিছু বানিয়েছেন এবং সপ্তমদিনে তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন| এইভাবে বিশ্রামের দিনটি প্রভুর আশীর্বাদ ধন্য - ছুটির দিন| প্রভু এই দিনটিকে বিশেষ দিন হিসাবে সৃষ্টি করেছেন| 12 “তুমি অবশ্যই তোমার পিতামাতাকে সম্মান করবে, তাহলে তোমরা তোমাদের দেশে দীর্ঘ জীবনযাপন করবে| য়েটা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের দিচ্ছেন| 13 “কাউকে হত্যা কোরো না| 14 “ব্যাভিচার কোরো না| 15 “চুরি কোরো না| 16 “অন্যদের সম্বন্ধে মিথ্যা বোলো না| 17 “তোমাদের প্রতিবেশীর ঘরবাড়ীর প্রতি লোভ কোরো না| তার স্ত্রীকে ভোগ করতে চেও না| এবং তার দাস-দাসী, গবাদি পশু অথবা গাধাদের আত্মসাত্ করতে চেও না| অন্যদের কোন কিছুর প্রতি লোভ কোরো না|” 18 ঐ সমযে, লোকজন বজ্র নির্ঘোষ শুনতে পেল এবং বিদ্য়ুত্ দেখতে পেল| তারা শিঙার শব্দ শুনতে পেল এবং দেখল ধোঁয়া ওপর দিকে উঠছে| এই দেখে লোকরা ভয়ে কুঁকড়ে গেল| পর্বত থেকে দূরে দাঁড়িয়ে তারা এই ঘটনা দেখতে লাগল| 19 তখন লোকরা মোশিকে বলল, “তুমি যদি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাও তাহলে তা আমরা শুনব| কিন্তু ঈশ্বর য়েন আমাদের সঙ্গে কথা না বলেন| তিনি কথা বললে আমরা ভয়ে মারা যাব|” 20 তখন মোশি তাদের বলল, “ভয় পেও না| প্রভু তোমাদের পরীক্ষা করতে আবির্ভূত হয়েছেন| তিনি চান তোমরা তাঁকে সম্মান কর, যাতে তোমরা পাপ কাজ না কর|” 21 লোকরা পর্বত থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকল, আর তখন মোশি অন্ধকার মেঘের ভেতর ঈশ্বরের কাছে গেল| 22 তখন প্রভু মোশিকে, ইস্রায়েলের লোকদের এই কথাগুলি বলার জন্য বললেন: “তোমরা দেখেছো য়ে আমি স্বর্গ থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছি| 23 সুতরাং তোমরা আমার সঙ্গে তুলনা করে সোনা অথবা রূপো দিয়ে অন্য কোন মূর্ত্তি গড়বে না| 24 “আমার জন্য একটি বিশেষ বেদী তৈরী করো| বেদী তৈরীর সময় মাটি ব্যবহার করবে| আমার প্রতি উত্সর্গ হিসেবে ঐ বেদীর ওপর হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন করবে| বলিতে তোমাদের গৃহপালিত মেষ অথবা গবাদি পশু ব্যবহার করবে| যেখানে যেখানে আমি তোমাদের মনে রাখতে বলেছি সেই সব স্থানে তোমরা এই বলিগুলি দেবে| তখন আমি এসে তোমাদের আশীর্বাদ করব| 25 পাথরের বেদী তৈরী করলে কোন লোহার অস্ত্র দিয়ে, কাটা পাথর ফলক দিয়ে সেই বেদী তৈরী করবে না| যদি তা করো তাহলে সেই বেদী গ্রহণয়োগ্য হবে না| 26 এবং আমার বেদীতে কোন সিঁড়ি তৈরী করবে না| যদি বেদীতে সিঁড়ি থাকে তাহলে ঐ সিঁড়ি দিয়ে মানুষ যখন উঠবে তখন নীচের লোকদের কাছে তাদের নগ্নতা প্রকাশ পাবে|”
1 তারপর ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “তুমি অন্য এই সব নিয়মের কথাও লোকদের বলবে| 2 “তুমি যদি ইব্রীয় দাস ক্রয় করো তবে সে ছয় বছর দাসত্ব করার পর বিনামূল্যে মুক্তি পাবে| 3 যদি তোমার দাস থাকাকালীন সে বিবাহিত না হয় তাহলে মুক্তির সমযেও সে একাই মুক্তি পাবে| কিন্তু যদি সে বিবাহিত হয় তাহলে সে সস্ত্রীক মুক্তি পাবে| 4 যদি দাসটি বিবাহিত না হয় তাহলে তার মনিব তাকে বিয়ে দিতে পারে| সে যদি পুত্র অথবা কন্যা ধারণ করে তাহলে সে এবং তার ছেলেমেয়েরা মনিবের অধিকারভুক্ত হবে এবং সে নিজে ঐ মনিবের কাছে থাকবে এবং দাসের নিজের কর্মকাল শেষ হবার পর সে একা মুক্তি পাবে| 5 “কিন্তু যদি দাসটি বলে, ‘আমি আমার মনিবকে, আমার পত্নীকে এবং ছেলে-মেয়েদের ভালবাসি, তাই আমি মুক্ত হতে চাই না,’ 6 যদি এরকম হয় তাহলে তার মনিব দাসটিকে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে আসবে| তারপর তার মনিব তাকে একটি দরজা বা দরজার কাঠের কাঠামোর কাছে নিয়ে যাবে| তারপর ছুঁচালো একটি যন্ত্র দিয়ে মনিব তার দাসের কানে একটি ফুটো করবে| তাহলে সেই দাস সারাজীবন তার মনিবের সেবা করবে| 7 “কোন ব্যক্তি যদি তার কন্যাকে দাস হিসেবে বিক্রি করতে চায় তাহলে তার মুক্তি পাওয়ার নিয়ম পুরুষ দাসদের নিয়মের থেকে আলাদা হবে| 8 যদি সেই মহিলার মনিব তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয় তাহলে সে তার মহিলা দাসটিকে তার পিতার কাছে ফেরত্ পাঠাতে পারে| যদি মনিবটি তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে অন্য লোকের কাছে তাকে বিক্রি করতে পারবে না কারণ সেটা হবে অন্যায| 9 যদি তার মনিব মহিলা দাসটিকে তার পুত্রের সঙ্গে বিয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় তবে তাকে দাসের মতো না রেখে মেয়ের মতো রাখতে হবে| 10 “যদি মনিব অন্য কোনও স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তাহলে সে তার প্রথম স্ত্রীকে কম খাবার বা কম জামাকাপড় দিতে পারবে না| সে তার স্ত্রীর প্রতি বিবাহের অধিকার হিসেবে সব কর্তব্য করবে| 11 মনিব যদি এই তিনটি জিনিস না করে তাহলে তার স্ত্রী বিনামূল্যে তার কাছে থেকে মুক্তি পাবে| 12 “যদি কোনও ব্যক্তি কাউকে আঘাত করে হত্যা করে তাহলে সেই ব্যক্তিকেও হত্যা করা হবে| 13 কিন্তু যদি একটি দুর্ঘটনায় কোন ব্যক্তি মারা যায তাহলে সেটা ঈশ্বরের অভিপ্রায় বলে ধরে নেওয়া হবে| আমি কতগুলি বিশেষ জায়গা বেছে দেব য়েগুলি লোকরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করবে| 14 কিন্তু কোনও ব্যক্তি যদি ক্রোধ বা ঘৃণা থেকে কাউকে হত্যা করে তবে সে শাস্তি পাবে| তাকে আমার বেদী থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হবে| 15 “য়ে ব্যক্তি পিতা বা মাতাকে আঘাত করবে তাকে হত্যা করা হবে| 16 “যদি কোনও ব্যক্তি কাউকে চুরি করে দাস হিসেবে বিক্রি করতে চায় বা নিজের দাস করে রাখতে চায় তাহলে তাকে হত্যা করা হবে| 17 “য়ে ব্যক্তি তার পিতা বা মাতাকে অভিশাপ দেয়, তাকে হত্যা করা হবে| 18 “পরস্পর ঝগড়া করবার সময় যদি একজন অপর ব্যক্তিকে পাথর অথবা তার মুষ্টি দিয়ে আঘাত করে তাহলে তার শাস্তি পাওয়া উচিত্| য়ে আহত সে যদি মারা না যায় তবে য়ে আঘাত করেছে তাকে হত্যা করা হবে না| 19 আহত ব্যক্তি যদি কিছু সময়ের জন্য শয্যাশায়ী থাকে তাহলে য়ে আঘাত করেছে সে তার সমযের ক্ষতিপূরণ দেবে, যতদিন না আহত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠে| 20 “কখনও কখনও মনিব তার পুরুষ বা স্ত্রী দাসদের প্রহার করে থাকে, যদি এই প্রহারে দাসটি মারা যায় তবে তার ঘাতক শাস্তি পাবে| 21 কিন্তু যদি দাসটি মারা না গিয়ে কযেকদিন বাদে সেরে ওঠে তবে তার মনিবকে কিছু বলা হবে না কারণ সে তার দাসের জন্য অর্থ ব্যয করে থাকে এবং সে দাসটি তার সম্পত্তি| 22 “দুটি মানুষ ঝগড়া করার সময় যদি কোনও গর্ভবতী মহিলাকে আঘাত করে এবং এর ফলে যদি তার গর্ভপাত হয়ে যায এবং অন্য কোন ক্ষতি না হয় তাহলে য়ে আঘাত করেছে সে শুধু তাকে জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেয়ে যাবে| ঐ মহিলার স্বামী জরিমানার টাকার অংশ ঠিক করে দেবে| বিচারকরা এই ব্যাপারে তাকে সাহায্য করবে| 23 কিন্তু যদি সেই মহিলার আঘাতের ফলে কোন ক্ষতি হয় তাহলে য়ে তাকে আঘাত করবে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে, য়ে অন্যকে হত্যা করবে তাকেও মরতে হবে| একজনের জীবনের বদলে অন্যের জীবন নেওয়া হবে| 24 তুমি চোখের বদলে চোখ নেবে, দাঁতের বদলে দাঁত, হাতের বদলে হাত, পায়ের বদলে পা নেবে| 25 পোড়ার বদলে পোড়াবে, চোটের বদলে চোট দেবে, কাটার বদলে কাটবে| 26 “যদি কোন ব্যক্তি তার দাসের চোখে আঘাত করে তাকে অন্ধ করে দেয় তাহলে সেই দাসকে মুক্তি দিয়ে দিতে হবে| তার চোখ হল তার মুক্তির মূল্য, স্ত্রী বা পুরুষ দাসের ক্ষেত্রে এই একই নিয়ম খাটবে| 27 যদি কোনও মনিব তার দাসকে মুখে আঘাত করে তার দাঁত ফেলে দেয় তবে তাকে মুক্তি দিতে হবে, তার দাঁত হবে তার মুক্তির মূল্য, এই নিয়ম স্ত্রী ও পুরুষ উভয় দাসের ক্ষেত্রেই প্রয়োজ্য় হবে| 28 “যদি কোনও ব্যক্তির ষাঁড় কোন স্ত্রী বা পুরুষকে মেরে ফেলে তাহলে ঐ ষাঁড়কে পাথর দিয়ে মেরে হত্যা করতে হবে| ঐ ষাঁড়কে খাওয়া ও যাবে না| কিন্তু ষাঁড়ের মালিক দোষী হবে না| 29 কিন্তু যদি ষাঁড়টি ইতিপূর্বে কাউকে আঘাত করে থাকে এবং তার মালিককে সতর্ক করে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেই মালিককে দোষী সাব্যস্ত করা হবে| কেননা সে জানা সত্ত্বেও ষাঁড়টিকে যথাস্থানে বেঁধে বা আটকে রাখে নি| আর যদি এরকম ষাঁড়কে ছেড়ে রাখার ফলে কারো প্রাণ যায তাহলে সেই ষাঁড় ও তার মালিক দুজনকেই পাথর দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলা হবে| 30 কিন্তু মৃত ব্যক্তির পরিবার যদি অর্থ গ্রহণ করে তাহলে ষাঁড়ের মালিককে মারা হবে না| কিন্তু সে বিচারকদের নির্ধারিত টাকার অঙ্ক জরিমানা দেবে| 31 “এই একই নিয়ম বলবত্ থাকবে যদি ষাঁড়টি কোনও লোকের পুত্র বা কন্যাকে হত্যা করে| 32 কিন্তু ষাঁড়টি যদি কোনও দাসকে হত্যা করে তবে তার মালিককে 30 টুকরো রূপো দিতে হবে মূল্য হিসেবে এবং ষাঁড়টিকে পাথর দিয়ে মারা হবে| এই নিয়ম স্ত্রী ও পুরুষ দাসের ক্ষেত্রে একই হবে| 33 “কোনও ব্যক্তি কুঁযোর ওপরের ঢাকা সরিয়ে দিতে পারে বা গভীর গর্ত খুঁড়ে ঢাকা না দিয়ে রাখতে পারে| যদি কোন ব্যক্তির পোষা জন্তু এসে এই গর্তে পড়ে যায তবে গর্তের মালিককে দাযী করা হবে| 34 গর্তের মালিককে জন্তুটির মূল্য দিতে হবে কিন্তু মূল্য দেওয়ার পর সে জন্তুটির দেহ নিজের কাছে রাখার অধিকার পাবে| 35 “যদি এক ব্যক্তির ষাঁড় আরেক ব্যক্তির ষাঁড়কে হত্যা করে তখন জীবিত ষাঁড়টিকে বিক্রি করে দিতে হবে| উভয় ব্যক্তি সেই বিক্রয় মূল্যের অর্ধেক ভাগ পাবে এবং মৃত ষাঁড়টির দেহের অর্ধেক ভাগ পাবে| 36 যদি কারো ষাঁড় অন্য কারো ব্যক্তির জন্তুদের গুঁতিযে মেরে ফেলার জন্য পরিচিত থাকে, তবে সেই ষাঁড়ের মালিককে তার জন্য দাযী করা হবে| যদি ষাঁড়টি অন্য ষাঁড়কে মেরে ফেলে, তাহলে তার মালিককেই দায়ী করা হবে কারণ সে ষাঁড়টিকে ছেড়ে রেখেছে| তাকে অবশ্যই মৃত ষাঁড়ের মূল্য দিতে হবে কিন্তু মৃত ষাঁড়টি সে নিজের জন্য রাখতে পারে|
1 “য়ে ব্যক্তি ষাঁড় বা মেষ চুরি করেছে তাকে কিভাবে শাস্তি দেবে? যদি সে প্রাণীটিকে হত্যা করে বা বিক্রি করে দেয় তবে সে সেটা ফেরত্ দিতে পারবে না, তাই তাকে একটা চুরি করা ষাঁড়ের বদলে পাঁচটা ষাঁড় কিনে দিতে হবে বা একটা মেষের বদলে চারটি মেষ দিতে হবে| তাকে চুরির জন্য জরিমানা দিতে হবে| 2 যদি তার কাছে কিছু না থাকে তাহলে তাকে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হবে| যদি তুমি লোকটির কাছে জন্তুটিকে দেখতে পাও, তবে চোরকে অবশ্যই চুরি করা জন্তুটির মূল্যের দ্বিগুণ মূল্য দিতে হবে| প্রাণীটি ষাঁড় বা গাধা বা মেষ যাই হোক না কেন নিয়ম একই থাকবে|“যদি সিঁধ কেটে চুরি করার সময় কোনও চোর মারা যায তবে কেউই দোষী হবে না| কিন্তু যদি এটা দিনের বেলায হয় তাহলে য়ে হত্যা করবে সে দাযী হবে| 3 4 5 “যখন একটি ব্যক্তি তার গৃহপালিত জন্তুদের তার নিজের ক্ষেতে অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতে চরতে দেয়, কিন্তু তারা যদি বিপথে গিয়ে অন্য কারো ক্ষেতে অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতে চরে বেড়ায তাহলে তাকে তার ক্ষেতের অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতের সবচেযে ভালো ফসল দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে| 6 “কেউ যদি তার প্রতিবেশীর শস্যের গাদা অথবা য়ে শস্য কাটা হয়নি তা অথবা পুরো ক্ষেতটি পুড়িয়ে ফেলে, তাহলে যা কিছু পুড়ে গেছে তার ক্ষতিপূরণ তাকে দিতে হবে| 7 “কোনও ব্যক্তি তার টাকা বা অন্য কিছু তার প্রতিবেশীর কাছে রাখতে দিতে পারে| কিন্তু যদি প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে সেই জিনিস চুরি হয়ে যায তবে কি করবে? চোরকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে| যদি চোরকে পাওয়া যায তবে চোর চুরি করা জিনিসের মূল্যের দ্বিগুণ জরিমানা দেবে| 8 যদি চোরকে খুঁজে পাওয়া না যায়, তাহলে ঈশ্বর বিচার করবেন য়েখান থেকে চুরি হয়েছে সেই বাড়ির মালিক দোষী কি না| বাড়ির মালিক ঈশ্বরের কাছে যাবে এবং ঈশ্বর বিচার করবেন য়ে সে কিছু চুরি করেছে কি না| 9 “যদি কোনও দুই ব্যক্তি উভয়েই কোনও ষাঁড় বা গাধা বা মেষ বা কোনও হারানো বস্তুকে নিজের বলে দাবী করে তাহলে তারা দুজনেই ঈশ্বরের কাছে যাবে| ঈশ্বর যাকে দোষী করবেন সে অপর ব্যক্তিকে সেই জিনিসটির মূল্যের দ্বিগুণ দাস দেবে| 10 “কোনও ব্যক্তি তার কোন প্রাণীর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তার প্রতিবেশীকে অল্প সময়ের জন্য ভার দিতে পারে| সেটা গাধা বা ষাঁড় বা মেষ হতে পারে কিন্তু যদি সেই প্রাণী আহত হয় বা মারা যায বা কারো অলক্ষ্যে চুরি হয়ে যায তাহলে কি করবে? 11 তখন সেই প্রতিবেশীকে প্রভুর নামে শপথ করে বলতে হবে য়ে সে চুরি করে নি| তখন প্রাণীর মালিক সেই শপথ গ্রাহ্য করবে এবং প্রতিবেশীকে সেই মৃত প্রাণীর জন্য কোন জরিমানা দিতে হবে না| 12 কিন্তু যদি সেই প্রতিবেশী চুরি করে থাকে তবে তাকে জরিমানা দিতে হবে| 13 যদি কোন বন্য জন্তু প্রাণীটিকে মেরে ফেলে তবে তার দেহ প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হবে| তাহলে প্রতিবেশীকে জরিমানা দিতে হবে না| 14 “যদি কোনও ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর কাছ থেকে ধার নেয় তবে সে তার জন্য দায়ী থাকবে| যদি কোন প্রানী আহত হয় বা মারা যায তবে প্রতিবেশী প্রানীর মালিককে জরিমানা দেবে| প্রতিবেশীই দায়ী কারণ মালিক সেখানে উপস্থিত ছিল না| 15 কিন্তু যদি প্রানীর মালিক সেখানে উপস্থিত থাকে তাহলে প্রতিবেশীকে জরিমানা দিতে হবে না| যদি প্রতিবেশী প্রানীটিকে ব্যবহারের জন্য টাকা দেয় তাহলে তাকে প্রাণীটি আহত হলে বা মারা গেলে জরিমানা দিতে হবে না| সে ঐ প্রানীটি ব্যবহারের জন্য যা মূল্য দিয়েছে তাই য়থেষ্ট| 16 “যদি, কোনও ব্যক্তি একজন অবাগদত্তা কুমারী মেয়ের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় তাহলে সে অবশ্যই তার পিতাকে পুরো য়ৌতুক দেবে এবং তাকে বিয়ে করবে| 17 যদি তার পিতা মেয়েটিকে সেই ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দিতে নাও চান তাহলেও তাকে মেয়েটির জন্য পুরো অর্থ দিতে হবে| 18 “যদি কোন স্ত্রীলোক দুষ্ট কূহক করে তবে তাকে বাঁচতে দিও না| 19 “কোন মানুষ যদি কোন পশুর সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক করে তবে তাকে অবশ্যই হত্যা করবে| 20 “যদি কোন ব্যক্তি মূর্ত্তিকে নৈবেদ্য দেয় তবে তাকে হত্যা করবে| তোমরা অবশ্যই কেবলমাত্র প্রভুর কাছেই নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে| 21 “মনে রাখবে তোমরা ইতিপূর্বে মিশরে বিদেশী ছিলে তাই তোমরা কোন বিদেশীকে ঠকাবে না বা আঘাত করবে না| 22 “কোন বিধবা বা অনাথ শিশুর কখনও কোনও ক্ষতি করো না| 23 যদি তুমি ঐসব বিধবা ও অনাথদের নির্য়াতন কর তাহলে আমি তাদের দুর্দশার কথা জেনে যাব| 24 এতে আমি রেগে গিয়ে তোমাকে হত্যা করব, যার ফলে তোমার স্ত্রী বিধবা এবং তোমার সন্তানরা অনাথ হবে| 25 “যদি আমার লোকদের মধ্যে কেউ দরিদ্র হয় এবং তাকে তুমি কিছু টাকা ধার দাও, তাহলে ঐ টাকার ওপর কোন সুদ দাবী করো না অথবা তাকে সুদ দিতে বাধ্য করো না| সুদ নিয়ে য়ে টাকা দেয় তার মতো ব্যবহার করো না| 26 যদি কোনও ব্যক্তি তোমার কাছে ধার শোধ করার প্রমাণ হিসেবে তার গায়ের শীতবস্ত্র বন্ধক রাখে তবে তুমি সুর্য়াস্তের আগে তাকে সেটা ফিরিযে দেবে| 27 যদি তার শীতবস্ত্র না থাকে তবে সে শীতে কষ্ট পাবে এবং তার কান্না আমি শুনতে পাবো কারণ আমি দয়ালু| 28 “ঈশ্বর বা জনগণের নেতাদের কখনও অভিশাপ দিও না| 29 “ফসল কাটার সময় প্রথম শস্যের দানা ও প্রথম ফলের রস বছরের শেষ পর্য়ন্ত অপেক্ষা না করেই আমাকে দেবে|“তোমাদের প্রথম সন্তানকে আমার কাছে উত্সর্গ করবে| 30 তোমাদের প্রথমজাত গরু বা মেষও আমাকে দেবে| প্রথম নবজাতককে তার মাযের কাছে সাত দিন রেখে অষ্টম দিনে আমাকে দিয়ে দেবে| 31 “তোমরা আমার বিশেষ লোক, কোন বন্য প্রাণীর মেরে ফেলা পশুর মাংস খাবে না| সেই মাংস কুকুরকে খেতে দেবে|
1 “অন্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপবাদ রটিও না| যদি তুমি আদালতে সাক্ষী দিতে যাও তাহলে একজন খারাপ লোককে সাহায্যের জন্য মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না| 2 “সবাই যা করছে তুমিও তাই করতে য়েও না| যদি একটি গোষ্ঠীর মানুষ অন্যায় করে তাহলে তুমিও তাদের দলে গিয়ে ভিড়ে য়েও না, বরং তুমি তাদের ইন্ধন না জুগিয়ে যা সঠিক এবং ন্যায্য তাই করো| 3 “কোন মামলা-মকদ্দমায় কোন দরিদ্র লোককে তোমার বিশেষ অনুগ্রহ করা অবশ্যই উচিত্ নয়| 4 “যদি কোনও ব্যক্তির বলদ অথবা গাধা হারিয়ে যায় আর তা যদি তুমি খুঁজে পাও তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তুমি হারিযে যাওয়া বলদ বা গাধাটিকে তার মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেবে| এমনকি সে যদি তোমার শত্রু হয় তাহলেও তুমি এটাই করবে| 5 “যদি কোন মালবাহী পশু মালের ভারে আর চলতে না পারার মতো অবস্থায় পৌঁছে যায তাহলে তুমি সেই পশুটির ভার লাঘব করতে সচেষ্ট হবে| সেই পশুটি যদি তোমার শত্রুও হয় তাহলেও তুমি তা করবে| 6 “কোনও দরিদ্রের সঙ্গে কোনরকম অন্যায় হতে দিও না| সাধারণ মানুষদের মতোই একই বিধানে সেই দরিদ্রের বিচার হওয়া উচিত| 7 “কাউকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করার আগে সচেতন থেকো| কারুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিও না| কোনও নির্দোষ মানুষকে শাস্তি পেতে দেখলে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাবে| য়ে একজন নির্দোষ মানুষকে হত্যা করে সে একজন পাপী এবং আমি কখনই তাকে ক্ষমা করব না| 8 “যদি কেউ তোমাকে তার অন্যায় কাজকর্মের সঙ্গী হবার জন্য ঘুষ দিতে চায় তাহলে তুমি সেই ব্যক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করবে না| কারণ ঘুষের অর্থ সত্য়কে দেখার দৃষ্টি ঢেকে দেয় এবং এই ধরণের ঘুষের অর্থ ভাল মানুষদের মিথ্যা বলতে প্রলুদ্ধ করে| 9 “কোনও বিদেশীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে না কারণ এক সময় তোমরা যখন মিশরে ছিলে তোমরাও তখন সে দেশে বিদেশী হিসেবেই বাস করতে| 10 “ছয় বছর ধরে জমিতে চাষ করো, বীজ বোনো, ফসল ফলাও| 11 কিন্তু সপ্তম বছরে আর নিজের জমিকে চাষের জন্য ব্যবহার করবে না| সপ্তম বছরটি হবে জমির বিশেষ বিশ্রামের সময়| তাই জমিতে সে বছর আর কোনও চাষ করবে না| তবু যদি সেই জমিতে কোনও ফসল ফলে তাহলে সেই ফসল গরীব মানুষদের দিয়ে দিতে হবে এবং বাকী যা পড়ে থাকবে তা খেতে দেবে বন্য প্রানীদের| তোমাদের দ্রাক্ষাক্ষেত ও জলপাই গাছগুলির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম খাটাবে| 12 “সপ্তাহে ছদিন কাজ করার পর সপ্তম দিনটি ছুটির দিন হিসাবে ঘোষণা করো| ছুটির দিন শুধু বিশ্রামের জন্য তুলে রাখবে| তুমি অবশ্যই তোমার ক্রীতদাসদের এবং বিদেশীদের এবং এমন কি তোমার গৃহপালিত ষাঁড় এবং গাধাদের সাময়িক অবকাশ দেবে| 13 “এই সমস্ত নিয়মগুলো তুমি সাবধানে মেনে চলবে| অন্য দেবতাদের নামও উচ্চারণ করো না; তোমার মুখে য়েন ওগুলো না শুনতে পাওয়া যায| 14 “তোমাদের জন্য বছরে তিনটি বিশেষ ছুটির দিন থাকবে| তোমাদের আমাকে উপাসনার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে আসতে হবে| 15 প্রথম ছুটির দিনটি হবে খামিরবিহীন রুটির উত্সব| আমার নির্দেশ মতো তা পালন করা হবে| এই সময় তোমরা য়ে রুটি খাবে তা হবে খামিরবিহীন| সাত দিন এই ভাবে চলবে| তোমরা এই নির্দেশ পালন করবে আবীব মাসে| কারণ এই সময়ই তোমরা মিশর থেকে ফিরে এসেছিলে| এই আবীব মাসে তোমরা প্রত্যেকে আমাকে উত্সর্গ করার জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসবে| 16 “দ্বিতীয় ছুটির দিনটি হবে ফসল কাটার উত্সব| গ্রীষ্মের প্রথম দিকে এই দ্বিতীয় ছুটির দিন হবে| সে সময় তোমরা ক্ষেতের ফসল কাটবে|“তৃতীয় ছুটির দিনটি হবে ফসল তোলার উত্সব| বছরের শেষে যখন তোমরা জমি থেকে সব শস্য ঘরে তুলবে তখনই এই উত্সব পালিত হবে| 17 “সুতরাং প্রত্যেক বছরে তিনদিন সকলে সেই নির্দিষ্ট বিশেষ স্থানে জড়ো হয়ে তোমাদের প্রভুর সঙ্গে কাটাবে| 18 “যখন তোমরা পশু বলি দিয়ে তার রক্ত প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করবে তখন আর খামির দেওয়া রুটি উত্সর্গ করবে না| এবং ঐ বলির মাংস তোমরা একদিনে খেয়ে নেবে, পরের দিনের জন্য জমিয়ে রাখবে না| 19 “ক্ষেত থেকে ফসল তোলার সময় সব ফসল তুলে প্রথমে নিয়ে আসবে তোমাদের ঈশ্বরের গৃহে|“কোন ছাগ শিশুকে তার মাযের দুধে ফুটিয়ো না|” 20 ঈশ্বর বললেন, “দেখ তোমাদের জন্য আমি এক দূত জন পাঠাচ্ছি| আমি তোমাদের জন্য য়ে স্থান নির্বাচন করেছি তোমাদের সেইখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার পাঠানো দূত তোমাদের নেতৃত্ব দেবে| ঐ দূত তোমাদের রক্ষা করবে| 21 ঐ দূতকে অমান্য না করে তাকে অনুসরণ করো| তার বিরুদ্ধে কখনও অসন্তোষ প্রকাশ করো না| ঐ দূতের শরীরে আমার শক্তি আছে; সুতরাং সে কোনরকম অন্যায় বরদাস্ত করবে না| 22 তোমরা তার সব কথা মেনে চলবে| আমার সব কথাও অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে| যদি তোমরা তা করো তাহলে আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব| তোমাদের শত্রুদের বিরোধিতা করব এবং যারা তোমার বিরুদ্ধে যাবে আমি তাদেরও শত্রুতে পরিণত হব|” 23 ঈশ্বর বললেন, “আমার প্রেরিত দূত তোমাদের আগে আগে যাবে| সে তোমাদের নেতৃত্ব দেবে - ইমোরীয, হিত্তীয়, পরিষীয়, কনানীয, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে| কিন্তু আমি তাদের প্রত্যেককে পরাজিত করব| 24 “তাদের দেবতাদের তোমরা পূজা করবে না| তোমরা সেইসব দেবতাদের কাছে নতজানু হবে না| তাদের জীবনযাপনের সঙ্গে তোমরা নিজেদের জড়াবে না| তোমরা তাদের মূর্তিদের ধ্বংস করবে এবং তোমরা তাদের দেবতাকে মনে রাখার সমস্ত স্তম্ভ ভেঙ্গে ফেলবে| 25 তোমরা সর্বদা তোমাদের প্রভুর সেবা অবশ্যই করবে| আমি তোমাদের রুটি ও জলকে আশীর্বাদ করব| আমি তোমাদের কাছ থেকে সমস্ত রোগ সরিয়ে নেব| 26 তোমাদের মহিলারা সন্তান ধারণে সক্ষম হয়ে উঠবে| তাদের কেউই সন্তান প্রসবকালে মারা যাবে না| আমি তোমাদের দীর্ঘ জীবন দেব| 27 “তোমরা যখন তোমাদের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে তখন আমি তোমাদের শক্তি জোগাবো| তোমাদের শত্রুদের যাতে তোমরা হারাতে পারো তাতে আমি সাহায্য করব| তোমাদের শত্রুরা হতচকিত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাতে শুরু করবে| 28 আমি তোমাদের আগে একটা ভীমরুলপাঠাব| সেই তোমাদের শত্রুদের জোর করে তাড়িয়ে দেবে| হিব্বীয়, কনানীয় ও হিত্তীয়রা তোমাদের দেশ ত্যাগ করে পালাবে| 29 কিন্তু আমি শীঘ্রই ঐ সমস্ত মানুষগুলোকে জোর করে তোমাদের দেশ থেকে তাড়াব না| অন্তত এক বছর আমি ওদের তাড়াব না| কারণ তাহলে খুব তাড়াতাড়ি তোমাদের দেশ জনমানব শূন্য হয়ে পড়বে| ফলে সে সময় বন্য প্রানীরা ঢুকে পড়ে বংশবৃদ্ধির দ্বারা দেশটাকে দখল করে নেবে এবং তখন সেই সমস্ত প্রানীরাই তোমাদের সমস্যা সৃষ্টি করবে| 30 তাই আমি খুব ধীরে ধীরে ঐ মানুষগুলোকে তোমাদের দেশ থেকে তাড়াব| তোমরাও ক্রমশঃ দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে থাকবে আর আমিও ওদের একে একে তাড়াতে থাকব| 31 “সূফ সাগর থেকে ফরাত্ নদী পর্য়ন্ত সমস্ত জমি তোমাদের দিয়ে দেব| তোমাদের দেশের পশ্চিম সীমান্ত হবে পলেষ্টীয়দের সমুদ্র পর্য়ন্ত| আর পূর্ব দিকের সীমান্ত হবে আরব দেশের মরুভূমি| এই সীমানার মধ্যে বসবাসকারী প্রত্যেককে আমি তোমাদের দিয়েই পরাজিত করে তাড়িয়ে ছাড়ব| 32 “তোমরা ঐ সমস্ত লোকদের সঙ্গে অথবা তাদের দেবতাদের সঙ্গে কোনরকম চুক্তি করবে না| 33 তাদের তোমাদের দেশে একদম থাকতে দেবে না| যদি থাকতে দাও তাহলে তাদের ফাঁদে পা দিয়ে তোমরা আমার বিরুদ্ধে পাপ করবে এবং তোমরা ঐ লোকদের দেবতাদের পূজা করতে বাধ্য হবে|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি, হারোণ, নাদব, অবীহূ এবং ইস্রায়েলের 70 জন প্রবীণ নেতৃবৃন্দ পর্বতের ওপর উঠে এসে দূর থেকে আমার উপাসনা করো| 2 কিন্তু মোশি একাই প্রভুর কাছে আসবে| অন্যরা য়েন প্রভুর কাছে না যায| এমনকি বাকী লোকরা মোশির সঙ্গে পর্বতে উঠবে না|” 3 প্রভুর সমস্ত নির্দেশ ও সমস্ত বিধি মোশি লোকদের বলল| তখন সবাই রাজী হল এবং বলল, “আমরা প্রভুর সমস্ত নির্দেশ মেনে চলব|” 4 তখন মোশি একটি খাতায় প্রভুর সমস্ত নির্দেশ লিখে রাখল| পরদিন সকালে সে জেগে উঠল এবং পর্বতের পাদদেশে একটি বেদী এবং ইস্রায়েলের দ্বাদশ পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে বারোটি স্তম্ভ নির্মাণ করল| 5 তারপর মোশি ইস্রায়েলের যুবকদের পাঠাল প্রভুর বেদীতে কিছু উত্সর্গের জন্য| এই যুবকরা হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য স্বরূপ প্রভুর কাছে ষাঁড়গুলি উত্সর্গ করল| 6 পশু বলির সময় মোশি পাত্রগুলিতে অর্ধেক রক্ত রাখল এবং বাকী রক্ত বেদীর ওপর ঢেলে দিল| 7 মোশি তখন খাতাটি নিয়ে তাতে লেখা চুক্তিগুলি চেঁচিয়ে পড়তে থাকল| লোকরা তা শুনে বলে উঠল, “আমরা প্রভুর দেওয়া বিধিগুলি শুনেছি এবং আমরা তা মানতে রাজি আছি|” 8 তখন মোশি লোকদের মাঝে উঠে দাঁড়াল এবং ঐ পাত্রগুলিতে রাখা রক্ত ছিটিয়ে দিল| সে বলল, “দেখ, এই হচ্ছে সেই রক্ত যা তোমাদের সঙ্গে প্রভুর চুক্তির সূচনা করে| চুক্তিটিকে ব্যাখ্যা করার জন্যই ঈশ্বর তোমাদের জন্য বিধি প্রণযন করেছেন|” 9 এরপর মোশি, হারোণ, নাদব, অবীহূ এবং ইস্রায়েলের 70 জন প্রবীণ নেতৃবৃন্দ সেই পর্বতে চড়ল| 10 পর্বতের ওপর তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে দেখতে পেল| ঈশ্বর নীল আকাশের মতো স্বচ্ছ নীলকান্ত মণির রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলেন| 11 ইস্রায়েলের প্রবীণদের প্রত্যেকে ঈশ্বরকে দেখতে পেল| কিন্তু ঈশ্বর তাদের ধ্বংস করেন নি|পরিবর্তে তারা সবাই একত্রে ভোজন ও পান করল| 12 প্রভু মোশিকে বললেন, “পর্বতের ওপর আমার কাছে এসো এবং ওখানে থাকো| আমি লোকদের জন্য আমার শিক্ষামালা ও বিধিগুলি দুটো প্রস্তর ফলকে লিখে রেখেছি| আমি এই প্রস্তর ফলকগুলি তোমাকে দিতে চাই|” 13 তখন মোশি ও তার পরিচারক যিহোশূয় ঈশ্বরের কাছে যাওয়ার জন্য পর্বতে চড়লো| 14 মোশি প্রবীণ নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলল, “এখানে তোমরা আমাদের দুজনের জন্য অপেক্ষা করো| আমরা তোমাদের কাছে ফিরে আসব| আমি যাবার পর তোমাদের কারো কোন সমস্যা হলে হারোণ ও হূরের কাছে যাবে|” 15 মোশি যখন পর্বতে উঠল তখন পর্বত মেঘে আচ্ছন্ন ছিল| 16 সীনয় পর্বতে প্রভুর মহিমা স্থায়ী হল| ছয় দিন পর্বত মেঘে ঢেকে রইল এবং সপ্তম দিনে ঈশ্বর মেঘের ভেতর থেকে মোশির সঙ্গে কথা বললেন| 17 আর তখন ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর মহিমা দেখতে পেল| য়েন এক আগুনের গোলা জ্বলছিল পর্বতের চূড়ায়| 18 তখন মোশি মেঘের মধ্যে দিয়েই পর্বতের চূড়ায় উঠতে লাগল| মোশি ঐ পর্বতে 40 দিন ও 40 রাত কাটিযেছিল|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো আমার জন্য উপহার নিয়ে আসতে| তারা ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের মনে মনে ঠিক করে নেবে তারা আমাকে কি দিতে চায| আমার হয়ে তুমি সেই উপহারগুলি গ্রহণ করো| 3 এই হল তার ফর্দ যা যা তুমি তাদের থেকে গ্রহণ করবে: সোনা, রূপো এবং পিতল, 4 নীল, বেগুনী এবং লাল সূতো ও মসৃণ শনের কাপড় এবং ছাগলের লোম, 5 মেষের লাল রঙের চামড়া, মসৃণ চামড়া, বাবলা কাঠ, 6 প্রদীপের তেল, অভিষেকের তেল, সুগন্ধি মশলা, সুগন্ধি ধূপ তৈরির মশলা| 7 এগুলি ছাড়াও অলীক মণি এবং অন্যান্য মনিমাণিক্য য়েগুলো যাজক দ্বারা পরিহিত এফোদ এবং বক্ষাবরণের ওপর ব্যবহৃত হবে তা গ্রহণ করো|” 8 ঈশ্বর আরও বললেন, “লোকরা আমার জন্য একটি পবিত্র স্থান তৈরী করবে| তখন আমি তাদের মধ্যে থাকতে পারব| 9 আমি তোমাদের পবিত্র তাঁবু এবং তার আসবাবপত্রাদি কেমন দেখতে হওয়া উচিত্ দেখাব| এবং আমি য়েমনটি দেখাব ঠিক তেমনি একটি তাঁবু তৈরী করবে| 10 “একটি বিশেষ সিন্দুক তৈরী করবে| সিন্দুকটি তোমরা বাবলা কাঠ দিয়ে তৈরী করবে| পবিত্র সিন্দুকটির দৈর্য়্ঘ হবে 2.5 হাত, প্রস্থ 1.5 হাত এবং উচ্চতা 1.5 হাত| 11 পুরো সিন্দুকটির ভেতরে বাইরে সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে| তোমরা অবশ্যই তার চারধারে সোনার ঝালর দেবে| 12 তোমরা সিন্দুকটিকে বয়ে নেওয়ার জন্য চারটি সোনার আংটা সিন্দুকটির চারদিকে লাগাবে| দুদিকে দুটো করে সোনার কড়া বা আংটা থাকবে| 13 এরপর সিন্দুকটিকে বহন করার জন্য দুটো বাবলা কাঠের দণ্ড বানাবে| এই দণ্ডটিও সোনা দিয়ে মোড়া থাকবে| 14 এরপর সিন্দুকটির দু প্রান্তের আংটার মধ্যে দণ্ডগুলি ঢোকাবে এবং সিন্দুকটিকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করবে| 15 এই দণ্ডগুলি অবশ্যই সিন্দুকটির হাতার ভেতরদিকে দৃঢ় হয়ে থাকবে এবং সেগুলো কখনও খুলে নেওয়া হবে না|” 16 ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমাদের চুক্তিটি দেব| তা ঐ সিন্দুকে রেখে দেবে| 17 আড়াই হাত লম্বা ও দেড় হাত চওড়া একটি সোনার আচ্ছাদন তৈরী করবে| 18 “পেটানো সোনা দিয়ে দুইটি করূব দূত বানাও এবং সোনার আচ্ছাদনের দুই প্রান্তে তাদের রাখো| 19 আচ্ছাদনের দুই কোণায তাদের রেখে একই আচ্ছাদনের নীচে ওদের স্থাপন করবে| এরপর দূতদের এবং আচ্ছাদনটিকে একটি অখণ্ড বস্তু করবার জন্য তাদের যুক্ত করো| 20 দূতদের ডানা দুটিকে অবশ্যই আকাশের দিকে বিস্তৃত করে দিতে হবে| এবার ডানা সমেত দূতের মূর্তিকে সিন্দুকে এমনভাবে রাখবে য়েন দুজনেই মুখোমুখি আচ্ছাদনের দিকে তাকিযে থাকে| 21 “আমি তোমাদের চুক্তিটি দেবে এবং তোমরা তা সিন্দুকে রাখবে এবং সিন্দুকের ওপর ঐ ঢাকনাটি দিয়ে দেবে| 22 আমি যখন তোমাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করব তখন আমি পরস্পর মুখোমুখি ঐ দূতদের মাঝখানে আচ্ছাদনের ওপর থেকে কথা বলব| ইস্রায়েলবাসীকে দেবার জন্য আমি আমার সমস্ত আদেশসমূহ তোমাদের দেব| 23 “বাবলা কাঠের একটি টেবিল তৈরী করবে| টেবিলটি দৈর্য়্ঘে হবে 2 হাত, প্রস্থে 1 হাত এবং উচ্চতায় 1.5 হাত| 24 টেবিলটি খাঁটি সোনা দিয়ে মোড়া থাকবে এবং টেবিলের চারদিকে সোনার নিকেল করা থাকবে| 25 তারপর টেবিলের চারিদিকে 1 হাত চওড়া একটি কাঠের কাঠামো তৈরী করবে এবং ঐ কাঠের কাঠামোতে সোনার নিকেল করা থাকবে| 26 টেবিলের চার পায়ায চারটি সোনার কড়া তৈরী করে রাখবে| 27 পায়ায সোনার কড়া চারটি টেবিলের ওপর রাখা কাঠামো বরাবর সোজা তুলে আনবে| এবার চারটি কড়ায দণ্ড ঢুকিয়ে টেবিলটিকে বহন করা যাবে| 28 বাবলা কাঠেরই দণ্ড তৈরী করে য়েগুলি সোনারপাতে মুড়ে টেবিলটিকে বহন করবে| 29 সোনার থালা, চামচ, মগ ও পাত্র তৈরী করবে| মগ ও পাত্র পেয নৈবেদ্যর জন্য ব্যবহার করা হবে| 30 টেবিলের ওপর আমার জন্য বিশেষ রুটি রাখবে| এবং তা য়েন সর্বক্ষণই আমার সামনে রাখা থাকে| 31 “এরপর একটি দীপদান বানাবে| খাঁটি সোনাকে পিটিযে একটি সুদৃশ্য দীপদান তৈরী করবে| এই দীপদানের কাণ্ড, শাখা, গোলাধার প্রভৃতি সব অখণ্ড হবে| 32 “এই দীপদানে অবশ্যই ছয়টি শাখা থাকতে হবে| তিনটি শাখা একদিকে প্রসারিত থাকবে এবং অন্যদিকে থাকবে তিনটি শাখা| 33 প্রত্যেক শাখায় তিনটি ফুল থাকবে| ঐ দীপদানের ফুলগুলি বাদাম ফুলের মতো হবে এবং তাতে মুকুলও থাকবে| 34 দীপদানের জন্য আরও চারটে ফুল তৈরী করবে| এই ফুলগুলি হবে বাদাম ফুলের মতো, সঙ্গে মুকুলও থাকবে. 35 দীপদানের ছয়টি শাখা থাকবে| হাতলের বা দীপদানের কাণ্ডের দুদিক থেকে যথাক্রমে তিনটি করে শাখা বেরিয়ে আসবে| কাণ্ডের যেখানে শাখাগুলি মিশছে সেখানে ফুল ও মুকুল তৈরী করে লাগাবে| 36 পুরো দীপদানটি, এবং শাখা ফুলগুলিও খাঁটি সোনার হওয়া চাই| এবং পুরোটাই একছাঁচে অর্থাত্ অখণ্ড হতে হবে| 37 এরপর সাতটি প্রদীপ বানাবে দীপদানে রাখার জন্য| এই প্রদীপগুলিই দীপদানের সামনে আলোকিত করে রাখবে| 38 প্রদীপের চিমটাটিও সোনার হওয়া চাই| য়ে থালাটিতে দীপদানটি রাখা হবে সেটিকেও সোনার হতে হবে| 39 ঐ দীপদান ও দীপদানের আনুষঙ্গিক অংশ তৈরী করতে অবশ্যই 75 পাউণ্ড সোনা ব্যবহার করতে হবে| 40 পর্বতের ওপর আমি তোমাদের যা যা দেখিয়েছি তা তৈরী করার সময় সর্বদা সতর্ক থেকো, য়েন কোন ভুল না হয়|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, “পবিত্র তাঁবুটি তৈরী করবে 10টি পর্দা দিয়ে| পর্দাগুলি তৈরী হবে মসৃণ শনের কাপড়ে এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতোয| একজন দক্ষ কারিগর পর্দাটি বুনবে এবং তাতে সে করূব দূতের চিত্র সেলাই করবে| 2 প্রত্যেকটি পর্দা একই রকম আকৃতির তৈরী করবে| প্রত্যেকটি পর্দা দৈর্য়্ঘে 28 হাত ও প্রস্থে 4 হাত হবে| 3 এক ভাগ করবার জন্য 5টি পর্দাকে যুক্ত করো| পর্দাগুলি সমান দু ভাগে ভাগ করবে| 4 এক ভাগের শেষ পর্দাটির ধার জুড়ে ফাঁস তৈরী করবার জন্য নীল কাপড় ব্যবহার কর| 5 দুই ভাগের শেষ পর্দা দুটিতে 50টি নীল কাপড়ের ঝালর থাকবে| 6 পর্দাগুলিকে একত্রে যুক্ত করবার জন্য 50টি সোনার আংটা তৈরী কর| এটা পবিত্র তাঁবুটিকে একসঙ্গে যুক্ত করবে একটি অখণ্ড তাঁবু করবার জন্য| 7 “একটি তাঁবু তৈরী করবার জন্য ছাগলের লোম দিয়ে তৈরী এগারোটি পর্দা ব্যবহার করো| এই তাঁবুটি হবে আগের পবিত্র তাঁবুর আচ্ছাদন| 8 এই সমস্ত পর্দাগুলি অবশ্যই একই আকৃতির হবে| প্রত্যেকটি পর্দা হবে 30 হাত লম্বা এবং 4 হাত চওড়া| 9 এগারোটি পর্দা দুভাগে ভাগ করে এক ভাগে পাঁচটা ও অন্য ভাগে ছয়টি পর্দা রাখবে| পবিত্র তাঁবুর সামনে ষষ্ঠ পর্দাটি ভাঁজ করে রাখবে| 10 প্রতিটি ভাগের শেষে পর্দার নীচে 50টি ফাঁস লাগাও| 11 এবার পর্দাগুলি একত্র করার জন্য 50টি পিতলের আংটা তৈরী করবে এবং একসঙ্গে সেগুলি টাঙ্গাবে| 12 এই তাঁবুর শেষ পর্দাটির অর্ধেক অবশ্যই পবিত্র তাঁবুর পিছন দিকে ঝুলে থাকবে| 13 অন্য দিকেও 1 হাত করে পর্দা পবিত্র তাঁবুর ভূমিদেশ থেকে নীচের দিকে ঝুলে থাকবে| এইভাবে পবিত্র তাঁবুকে পরবর্তী তাঁবুটি চারিদিক থেকে আচ্ছাদনের মতো ঘিরে থাকবে| 14 ভেতরের তাঁবু থেকে বাইরের তাঁবুতে যাওয়ার জন্য দুখানি চামড়ার ছাদ তৈরী করবে| একটি হবে পুং মেষের পাকা চামড়ায তৈরী এবং অন্যটি হবে উত্কৃষ্ট চামড়ার| 15 “পবিত্র তাঁবুটিকে খাড়া করে রাখার জন্য বাবলা কাঠের একটি কাঠামো তৈরী করবে| 16 ঐ কাঠামোটি হবে 10 হাত উঁচু ও 1.5 হাত চওড়া| 17 প্রত্যেকটি কাঠামোর নীচে দুটো পায়া থাকবে| পবিত্র তাঁবুর প্রত্যেকটি কাঠামো একই আকারের হবে| 18 পবিত্র তাঁবুর দক্ষিণ দিকের জন্য 20টি কাঠামো বানাবে| 19 কাঠামোগুলির নীচে লাগানোর জন্য রূপো দিয়ে 40টি ভূমিমূল তৈরী করবে| প্রত্যেকটি কাঠামোর গোড়ায দুটি করে রূপোর পায়া বা ভূমিমূল থাকবে| 20 উত্তর দিকের জন্য আরও 20টি কাঠামো তৈরী করবে| 21 একই রকম ভাবে কুড়িটি কাঠামোর দুটি করে পায়ার জন্য আরও 40টি রূপোর পায়া তৈরী করে লাগাবে| 22 পবিত্র তাঁবুর পিছন দিক অর্থাত্ পশ্চিম দিকের জন্য আরও ছয়খানি কাঠামো বানাবে| 23 পবিত্র তাঁবুর পিছন দিকে দুই কোণের জন্য দুখানি কাঠামো বানাবে| 24 দুই কোণার কাঠামো দুখানি পরস্পরের সঙ্গে নীচের দিকে যুক্ত থাকবে| ওপরে একটি কড়া এই দুখানি কাঠামোকে একত্রে ধরে রাখবে| দু দিকের কোণাতেই একই রকম হবে| 25 এই রকম মোট আটটি কাঠামো থাকবে এবং 16টি রূপোর পায়া থাকবে| 26 “পবিত্র তাঁবুর কাঠামোগুলি জোড়া লাগানোর জন্য বাবলা কাঠ ব্যবহার করবে| পবিত্র তাঁবুর প্রথম দিকে পাঁচটি জোড়া তক্তা থাকবে| 27 অন্যদিকেও পাঁচটি তক্তা জোড়া দেওয়া থাকবে| এবং পিছনদিকেও পাঁচটি জোড়া তক্তা থাকবে| 28 তক্তাগুলির মাঝখানে একটি কেন্দ্রস্থিত হুড়কো লাগাতে হবে| 29 “কাঠামোগুলি তারপর সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে| তক্তাগুলি আটকানোর জন্য আংটা ব্যবহার করবে| আংটাগুলিও অবশ্যই সোনার হবে| কীলকগুলিকে সোনা দিয়ে ঢেকে দাও| 30 এইভাবে পর্বতের ওপর দেখানো পরিকল্পনা অনুযায়ীঅবশ্যই তোমাদের পবিত্র তাঁবুটি তৈরী করতে হবে| 31 “পবিত্র তাঁবুর ভেতর বিভাজনের জন্য মসৃণ শনের কাপড়ের পর্দা বানাবে| ঐ পর্দার ওপর অবশ্যই করূব দূতের চেহারা থাকতে হবে| লাল, নীল, বেগুনী সূতোর কারুকার্য়ে তা ফুটে উঠবে| 32 বাবলা কাঠের চারটি খুঁটি তৈরী করে সোনা দিয়ে তাও মুড়ে দেবে| চারটে খুঁটিতে সোনার আংটা লাগাবে| খুঁটিরে নীচে রূপোর পায়া লাগাবে| এবার পর্দাটি সোনার আংটায লাগিয়ে টাঙ্গিযে দেবে খুঁটির সঙ্গে| 33 পর্দাটি সোনার আংটাগুলির নীচে টাঙিযে দাও| তারপর ঠিক পর্দার পিছনে সাক্ষ্যসিন্দুক রাখবে| টাঙানো পর্দা দিয়ে পবিত্র স্থান এবং অতি পবিত্র স্থানের মধ্যে বিভাজন করবে| 34 অতি পবিত্র স্থান হিসাবে সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর একটি আবরণ রাখবে| 35 “পবিত্র স্থানে পর্দার উল্টো দিকে নির্মিত বিশেষ টেবিলটি রাখবে| টেবিলটি বসানো হবে পবিত্র তাঁবুর উত্তর দিকে| এবার দীপদানটিকে বসাবে দক্ষিণ দিকে টেবিলের থেকে খানিকটা দূরে| 36 “এবারে একটি পর্দা দিয়ে পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ পথ ঢেকে দেবে| পর্দাটি বানাবে লাল, নীল, বেগুনী সুতো ও মসৃণ শনের কাপড় দিয়ে| এবং তাতে চিত্র ফুটিযে তুলবে| 37 এই পর্দা টাঙানোর জন্য সোনার আংটা বানাবে| এবং বাবলা কাঠের পাঁচটি খুঁটি বানাবে| সেগুলিও সোনার পাতে মোড়া থাকবে| পাঁচটি খুঁটির পায়া পিতল দিয়ে বানাবে|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, “বাবলা কাঠের একটি বেদী বানাবে| বেদীখানা হবে চৌকো আকারের| বেদীটি উচ্চতায় হবে 3 হাত, লম্বায হবে 5 হাত এবং চওড়ায হবে 3 হাত| 2 বেদীর চার কোণার প্রত্যেকটির জন্য একটি করে শিখর বানাও এবং প্রত্যেকটি শিখর বেদীর কোনায যুক্ত কর যাতে তারা অখণ্ড হয়| তারপর ওটিকে পিতলের পাত দিয়ে মুড়ে দাও| 3 “বেদীর সমস্ত যন্ত্রপাতি এবং বাসন-কোসন পিতল দিয়ে তৈরী কর| বেদী থেকে ছাই তুলে নেওয়ার জন্য পাত্র, তার বেলচাসমূহ, সিঞ্চনকারী পাত্রসমূহ, আঁকশি এবং উনুন তৈরী কর| ব্যবহারের পর বেদীর হোমবলির ছাই দিয়ে এগুলো পরিষ্কার করবে| 4 বেদীর জন্য ছাকনীর আকারের একটি ঝাঁঝরি রাখবে| ঝাঁঝরির চারকোণার জন্য পিতলের আংটা বানাবে| 5 বেদীর নীচে এই ঝাঁঝরি রাখবে| কিন্তু এর উচ্চতা হবে বেদীর মধ্যভাগ পর্য়ন্ত| 6 “বেদীর জন্য পিতলে মোড়া বাবলা কাঠের খুঁটি ব্যবহার করবে| 7 বেদীর দুপাশে লাগানো আংটার মধ্যে খুঁটি ঢুকিয়ে বেদীকে যেখানে ইচ্ছে বয়ে নিয়ে বেড়াও| 8 খালি ধারগুলিতে কাঠের তক্তা ব্যবহার করে বেদীটি একটি শূন্য সিন্দুকের আকারে বানাও| এবং পর্বতে আমি য়েভাবে দেখালাম ঠিক সেইভাবেই বানাবে| 9 “পবিত্র তাঁবুর জন্যে একটি আদালত চত্বর বানাবে| দক্ষিণ দিকে 100 হাত লম্বা পর্দা দেওয়া দেওয়াল থাকবে| এই পর্দা মসৃণ শনের কাপড়ের তৈরী হওয়া চাই| 10 কুড়িটি খুঁটি এবং খুঁটিগুলোর নীচে 20টি পিতলের ভিত্তি তৈরী কর| আংটা এবং পর্দার দণ্ডগুলি রূপো দিয়ে তৈরী কর| 11 উত্তরদিকেও একইভাবে 100 হাত লম্বা একটি পর্দার দেওয়াল থাকবে| এর জন্য অবশ্যই 20টি খুঁটি ও 20টি পিতলের ভিত্তি থাকবে| এই খুঁটিগুলির জন্য আংটাসমূহ ও পর্দার দণ্ডগুলি হবে রূপোর তৈরী| 12 “আদালত চত্বরের পশ্চিম দিকে 50 হাত লম্বা পর্দা থাকবে| আর এর জন্য চাই দশটি খুঁটি ও পায়া| 13 পূর্ব দিকেও 50 হাত লম্বা পর্দা থাকবে| 14 এই পূর্ব দিকটিই হবে প্রবেশ পথ| প্রবেশ পথের একদিকে থাকবে 15 হাত লম্বা পর্দা| তার জন্যও চাই তিনটি খুঁটি ও পায়া| 15 অন্যদিকেও করতে হবে একই ব্যাপার সেই 15 হাত লম্বা পর্দা ও তার জন্য চাই 3টি খুঁটি ও 3টি পায়া| 16 “আদালত চত্বরের পথটি ঢাকতে বানাবে 20 হাত লম্বা পর্দা| পর্দা তৈরী হবে মিহি ক্ষৌমবস্ত্রের এবং লাল, নীল, বেগুনী ও লাল সুতোর এবং তাতে সুন্দর চিত্র ফুটিযে তুলবে| পর্দাটি টাঙ্গানোর জন্য চারটি খুঁটি ও চারটি পায়া থাকবে| 17 উঠোনের চারিদিকের সমস্ত খুঁটি পর্দার রূপোর দণ্ড দিয়ে যুক্ত হবে| খুঁটির ওপর পর্দা টাঙ্গানোর আংটাগুলি হবে রূপোর এবং খুঁটির নীচে পায়াগুলি হবে পিতলের| 18 আদালত চত্বরটি হবে 100 হাত লম্বা ও 50 হাত চওড়া| আদালত চত্বরের চারিদিকে 5 হাত উচ্চতার টানা পর্দার দেওয়াল থাকবে| পর্দাটি হবে মিহি মসীনা কাপড়ের| খুঁটির নীচের পায়াগুলি হবে পিতলের| 19 পবিত্র তাঁবু তৈরীর যাবতীয় জিনিসপত্র হবে পিতলের| উঠোনের চারিদিকের, পর্দায় ব্যবহারের জন্য কীলকগুলি পিতলের তৈরী হবে| 20 “ইস্রায়েলের লোকদের আদেশ করো, তারা য়েন প্রত্যেক সন্ধ্যায় য়ে প্রদীপ জ্বালানো হবে তার জন্য সব থেকে ভাল জলপাইযের তেল নিয়ে আসে| 21 হারোণ ও তার পুত্রদের কাজ হল প্রতি সন্ধ্যায় প্রভুর সামনে প্রদীপ জ্বালানোর জন্য প্রদীপ তৈরী করে রাখা| আর সাক্ষ্য সিন্দুকের ঘরের বাইরে পর্দা দিয়ে বিভাজন করা অন্য একটি ঘরে বা সমাগম তাঁবুর ঘরে তারা সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্য়ন্ত সর্বদা প্রভুর সামনে প্রদীপ বালিয়ে রাখবে| ইস্রায়েলের লোকরা এবং তাদের পরবর্তী উত্তরপুরুষরা এই চিরস্থায়ী বিধি মেনে চলবে|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার ভাই হারোণ ও তার পুত্রগণ নাদব, অবীহূ, ইলীয়াসর এবং ঈথামরকে তোমার কাছে আসতে বলো| তারাই যাজকরূপে ইস্রায়েলের লোকদের হয়ে আমাকে সেবা করবে| 2 “তোমার ভাই হারোণের জন্য একটি বিশেষ ধরণের পোশাক বানাবে| ঐ পোশাক হারোণকে বিশেষ সম্মান ও গৌরব প্রদান দেবে| 3 কযেকজন দক্ষ দর্জি সেই পোশাক তৈরী করবে| আমি সেই দর্জিদের বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদান করেছি| সেই দর্জিদের বলো হারোণের জন্য বিশেষ পোশাক তৈরী করতে| এই পোশাকই প্রমাণ করবে সেই যাজক আমাকে বিশেষ ভাবে সেবা করছে| তখন সে আমাকে যাজকের মতোই সেবা করবে| 4 তাদের য়ে পোশাকগুলি বানাতে হবে তা হল এই : একটি বক্ষাবরণ, একটি এফোদ, একটি নীল রঙের পরিচ্ছদ এবং একটি সাদা বোনা বস্ত্র, একটি পাগড়ি এবং একটি কোমর বন্ধনী| এই বিশেষ পোশাক পরিচ্ছদগুলি বানানো হবে হারোণ ও তার পুত্রদের জন্য| এই পোশাক পরার পরেই ওরা আমায যাজক হিসেবে সেবা করতে পারবে| 5 পোশাকগুলিতে ব্যবহার হবে সোনার জরি, মসৃণ মসীনা এবং লাল, নীল, বেগুনী সুতো| 6 “এফোদ বানাতে সোনার জরি, মসৃণ শনের কাপড় ও লাল, নীল, বেগুনী সুতো ব্যবহার করবে| দক্ষতার সঙ্গে অতি যত্নে তা তৈরী করতে হবে| 7 এফোদের প্রতিটি কাঁধে একটি করে কাঁধ পট্টি থাকবে| এফোদের দুই কোণার সঙ্গে কাঁধ পট্টি সংযুক্ত হবে| 8 “এফোদের জন্য কোমর বন্ধনী তৈরীর সময় দর্জীদের সতর্ক থাকতে হবে| এফোদের মতো কোমর বন্ধনীতেও সোনার জরি, মসৃণ শণের কাপড় ও লাল, নীল, বেগুনী সুতো ব্যবহার করা হবে| 9 “দুটো গোমেদমনি নাও এবং তার ওপর ইস্রায়েলের পুত্রদের নাম খোদাই কর| 10 ছয় জনের নাম এক মণিতে ও অন্য ছয় জনের নাম অপর মণিতে খোদাই করবে| নাম খোদাই করার সময় বযস অনুযায়ীবড় থেকে ছোট এইভাবে পর পর সাজাবে| 11 শীলমোহরের মতো নামগুলো খোদাই করে সোনা দিয়ে বাঁধিযে নেবে| 12 এবারে ঐ দুটি মণি এফোদের দুই কাঁধে লাগাবে| হারোণ যখন প্রভুর সামনে দাঁড়াবে তখন সে ইস্রায়েলের পুত্রদের নামের স্মারক হিসেবে ঐ বিশেষ আচ্ছাদনটি পরবে| 13 এফোদের দুই কাঁধে যাতে খোদাই করা মণি দুটি সঠিকভাবে আটকে থাকে তার জন্য খাঁটি সোনা ব্যবহার করবে| 14 খাঁটি সোনার দুটি শিকল তৈরী কর, প্রত্যেকটি দড়ির মত পাকানো এবং তাদের ঐ মণি দুটির সঙ্গে আটকে দাও| 15 “মহাযাজকের জন্য বক্ষাবরণ তৈরী করবে| দক্ষ দর্জিরা এফোদের মতোই য়ত্ন করে বক্ষাবরণ তৈরী করবে| বক্ষাবরণ তৈরী হবে সোনার জরি, মসৃণ মসীনা কাপড় ও লাল, নীল, বেগুনী সুতো দিয়ে| 16 বক্ষাবরণটিকে চারকোণা করবার জন্য অবশ্যই দুবার ভাঁজ করতে হবে| এর দৈর্য়্ঘ হবে 1 বিঘত্ ও প্রস্থ হবে 1 বিঘত্| 17 বক্ষাবরণে চার সারিতে মণিমানিক্য বসাও| প্রথম সারিতে থাকবে চূনী, পীতমণি ও মরকত| 18 দ্বিতীয সারিতে থাকবে পদ্মরাগ, নীলকান্ত ও পান্না| 19 তৃতীয় সারিতে থাকবে পোখরাজ, য়িস্ম ও কটাহেলা| 20 চতুর্থ সারিতে থাকবে বৈদুর্য়্য়, গোমেদ ও সূর্য়্য়কান্ত মণি| এই মণিগুলি নিজের নিজের সারিতে সোনায আঁটা থাকবে| 21 বারোটি মণির ওপর ইস্রায়েলের সন্তানদের নাম আলাদা আলাদা করে খোদাই থাকবে| সীলমোহরের মতো ঐ মণিগুলিতে বারোজনের নাম খোদাই করা থাকবে| 22 “বক্ষাবরণের ওপরের অংশটির জন্য খাঁটি সোনা দিয়ে প্রত্যেকটিকে দড়ির মত পাকিযে শেকল তৈরী কর| 23 দুটো সোনার আংটা লাগানো থাকবে বক্ষাবরণের দুই কোণে| 24 দুটো সোনার চেন বক্ষাবরণের দুপাশের আংটায লাগাবে| 25 পাকানো শেকল দুটির অন্য প্রান্ত এফোদের কাঁধের পট্টিগুলোর সঙ্গে অবশ্যই সামনে দিয়ে জোড়া থাকবে| 26 আরও দুটো সোনার আংটা বানিয়ে বক্ষাবরণের অন্য দুই প্রান্তে লাগাবে| এফোদের পরে বক্ষাবরণের ভিতর ভাগে এই আংটা থাকবে| 27 আরও দুটো সোনার আংটা এফোদের সামনের দিকে কাঁধের পট্টির নীচে লাগাবে| এফোদের কোমর বন্ধনীর ওপরে এই আংটা স্থাপন করতে হবে| 28 বক্ষাবরণ থেকে এফোদ যাতে খসে পড়ে না যায তার জন্য বক্ষাবরণের আংটার সঙ্গে এফোদের আংটা নীল রঙের ফিতে দিয়ে বেঁধে নেবে| এইভাবে বক্ষাবরণ কোমর বন্ধনীর কাছাকাছি থেকে এফোদকেও ধরে রাখতে সক্ষম হবে| 29 “হারোণ পবিত্র স্থানে প্রবেশ করলে তাকে বক্ষাবরণ পরতেই হবে| এইভাবে যখন সে প্রভুর সামনে দাঁড়াবে তখন সে তার বক্ষের ওপর স্মারক হিসেবে ইস্রায়েলের বারোজন সন্তানের নাম পরে থাকবে| 30 আর সেই বক্ষাবরণের অভ্যন্তরে উরীম ও তূম্মীম রাখবে| প্রভুর সামনে গেলে সর্বদা সেগুলি হারোণের হৃদয়ের ওপর থাকবে| এইভাবে হারোণ প্রভুর সামনে ইস্রায়েলের সন্তানদের বিচার প্রতিনিযত নিজের হৃদয়ের ওপর বয়ে নিয়ে বেড়াবে| 31 “এফোদের জন্য একটি সম্পূর্ণরূপে নীল রঙের আলখাল্লা তৈরী করবে| 32 আলখাল্লার মাঝখান দিয়ে মাথা ঢোকানোর জন্য একটি ছিদ্র করবে এবং এই ছিদ্রটির চারধার জুড়ে একটি বোনা কাপড়ের টুকরো সেলাই করে দাও যাতে এটি ছিঁড়ে না যায| এই কাপড় ছিদ্রটির চারদিকে গলাবন্ধনীর কাজ করবে, ফলে তা ছিঁড়ে যাবে না| 33 লাল, নীল, বেগুনী সুতো দিয়ে ডালিমের মতো সুতোর গোলা তৈরী কর এবং আলখাল্লার নীচে ঝুলিয়ে দেবে আর সুতোর বলের মাঝখানে সোনার ছোট ছোট ঘন্টা লাগাবে| 34 পুরো আলখাল্লার নীচের চারিদিকে এই রকম একটা করে সুতোর গোলা ও একটা করে সোনার ঘন্টা লাগানো হবে| 35 যাজকরূপে প্রভুকে সেবা করার সময় হারোণ এই আলখাল্লাটি পরবে| প্রভুর সামনে দাঁড়ানোর জন্য হারোণ পবিত্র স্থানের দিকে এগোলে ঐ ঘন্টাগুলি বাজবে এবং পবিত্র স্থান ছেড়ে বেরনোর সময়ও ঘন্টাগুলি বাজবে| এইভাবে হারোণ কখনও মারা যাবে না| 36 “নির্মল সোনার ফলক বানিয়ে তাতে শীলমোহরের মতো জনগণের উদ্দেশ্যে খোদাই করবে এই কথাগুলি: এটি প্রভুর কাছে উত্সর্গীকৃত| 37 সোনার ফলকটিকে নীল ফিতেতে আবদ্ধ করবে| পাগড়ির ওপর চারিদিকে নীল ফিতে বাঁধা থাকবে| পাগড়ির সামনের দিকে থাকবে সোনার ফলকটি| 38 হারোণ পাগড়ি সমেত ঐ সোনার ফলকটি মাথায় পরবে| আর তা সবসময় হারোণের মাথায় থাকবে| তার ফলে ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে য়ে সমস্ত উপঢৌকন দেবে হারোণ তা দোষ মুক্ত করে সব কিছু পবিত্র করে তুলবে যাতে সেই সমস্ত উপঢৌকন প্রভু গ্রহণ করতে পারেন| 39 “মসৃণ সাদা মসীনা সুতো দিয়ে আরও একটা আলখাল্লা বুনবে| পাগড়িও বানাবে মসৃণ মসীনা কাপড়ের| চিহ্নিত কোমর বন্ধনী বানাবে| 40 হারোণের পুত্রদের জন্যও গায়ের পোশাক, কোমর বন্ধনী ও পাগড়ি বানাবে| এই পোশাকই তাদের গৌরবান্বিত ও সম্মানিত করবে| 41 এই পোশাকগুলি তোমার ভাই হারোণ ও তার পুত্রদের পরাবে| যাজক হিসেবে অভিষেকের জন্য তাদের গায়ে বিশেষ সুগন্ধি তেল ছেটাবে| এইভাবে তারা পবিত্র হবে এবং প্রভুর সেবা করার য়োগ্য যাজক হয়ে উঠবে| 42 “যাজকদের নগ্নতা ঢাকার জন্য শরীরের ভেতরের পোশাক মসৃণ মসীনা কাপড়ে তৈরী হবে| এই ভেতরের পোশাক তাদের জঙঘা থেকে কোমর পর্য়ন্ত ঢেকে রাখবে| 43 সমাগম তাঁবুতে প্রবেশের সময় হারোণ ও তার পুত্রদের অবশ্যই এই পোশাকগুলি পরাতে হবে| পবিত্র স্থানে প্রভুর সেবার উদ্দেশ্যে বেদীর কাছে আসতে হলে তাদের এই পোশাক পরতে হবে| তারা যদি এই পোশাক না পরে তাহলে তাদের মরতে হবে কারণ তারা অপরাধী| এই পোশাক পরার বিধি হারোণ ও তার পরবর্তী বংশধরদের চিরস্থায়ীভাবে মেনে চলতেই হবে|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, “এখন আমি তোমাকে বলব আমার সেবায বিশেষ যাজক হিসেবে নিয়োগ করার জন্য হারোণ ও তার পুত্রদের কি কি করতে হবে| একটি নির্দোষ ছোট বলদ ও দুটি মেষশাবক জোগাড় করে আনো| 2 তারপর উত্কৃষ্ট মানের গমের আটা থেকে খামিরবিহীন রুটি তৈরী করো এবং একই আটা বা মযদা দিয়ে জলপাইযের তেল মিশিয়ে পিঠে তৈরী করবে| তেলে ভাজা সরু পিঠেও বানাবে| 3 এই রুটি ও পিঠেগুলি ঝুড়িতে ভরবে| এবার এই ঝুড়িটি এবং ষাঁড় ও মেষ দুটি সমাগম তাঁবুতে নিয়ে এসো| 4 “এরপর হারোণ ও তার পুত্রদের সমাগম তাঁবুর দরজায় নিয়ে আসবে| পরিষ্কার জলে তাদের স্নান করাবে| 5 বিশেষভাবে বানানো পোশাকটি হারোণকে পরাবে| তাকে বোনা সাদা পোশাকটি এবং নীল বস্ত্র সমেত এফোদ পরাবে| এফোদের সঙ্গে যুক্ত করবে বক্ষাবরণ| এরপর সুদৃশ্য কোমরবন্ধনী লাগিয়ে দেবে| 6 তার মাথায় পাগড়ি পরাও এবং পাগড়িটি ঘিরে বিশেষ পবিত্র মুকুটটি পরাও| 7 এবার অভিষেকের তেল হারোণের মাথায় ছিটিয়ে দেবে| এইভাবে হারোণ যাজকরূপে অভিষিক্ত হবে| 8 “এরপর হারোণের পুত্রদের ঐ স্থানে নিয়ে এসে সাদা আলখাল্লা পরাবে| 9 তাদের কোমরে বাঁধবে কোমরবন্ধনী| তাদের মাথায় পরাবে শিরোভূষণ| এইভাবে তারা যাজক হিসাবে চিহ্নিত হবে| চিরস্থায়ী অধিকার বিধি অনুযায়ীতারা যাজক পদে উত্তীর্ণ হবে| এইভাবে তুমি হারোণ ও তার পুত্রদের যাজক হিসাবে অভিষিক্ত করবে| 10 “এবার সেই বলদকে সমাগম তাঁবুর সামনে আনো| হারোণ ও তার পুত্ররা সেই বলদের ওপর তাদের হাত রাখবে| 11 সমাগম তাঁবুর প্রবেশপথে ঐ বলদটিকে প্রভুর উপস্থিতিতে বলি দাও| প্রভু তা দেখবেন| 12 সেই বলদ বলির কিছু পরিমাণ রক্ত নাও এবং তোমার আঙ্গুল দিয়ে বেদীর শৃঙ্গগুলির ওপরে ঐ রক্তের প্রলেপ লাগিয়ে দাও| বাকি রক্ত বেদীর নীচে ছড়িয়ে দেবে| 13 এবার বলি দেওয়া সেই বলদের শরীরের সমস্ত চর্বি, য়কৃত্ এবং চর্বি এবং দুটো মুত্রগ্রন্থী ও তার চারপাশের চর্বি জড়ো করে বেদীর ওপর জ্বালাবে| 14 এবার ঐ বলদের মাংস, চামড়া এবং গোবর তাঁবুর বাইরে নিয়ে যাও এবং তা আগুনে পুড়িয়ে দাও| এই পদ্ধতিতে যাজকদের পাপমোচনের হোমবলি হবে| 15 “এবার হারোণ ও তার পুত্রদের বলো একটি মেষের ওপর হাত রাখতে| 16 ঐ মেষটিকে কেটে ফেল| তার এবং বলির রক্ত সংগ্রহ কর এবং ঐ রক্ত বেদীর চারপাশে লাগিয়ে দাও| 17 এরপর মেষটিকে খণ্ড খণ্ড করে কাটো| মেষের অভ্যন্তর ভাগ এবং পা-গুলি ধোও| এই অংশগুলি অন্যান্য অংশের সঙ্গে এবং মাথার সঙ্গে রাখো| 18 এবার সেগুলি বেদীতে এনে পুড়িয়ে দেবে| বেদীতে পোড়ালে তা হবে হোমবলি| প্রভুর উদ্দেশ্যে আগুনের উপহার| প্রভু এর গন্ধে খুশী হবেন| 19 “এবার অন্য একটি মেষ নিয়ে এসো এবং হারোণ ও তার পুত্রদের বলো মাথায় হাত রাখতে| 20 ছাগলটিকে বলি দাও ও তার একটু রক্ত নাও এবং সেটি হারোণ ও তার পুত্রদের ডান কানের লতিতে লাগিয়ে দাও| একটু রক্ত লাগাও ডান হাতের বুড়ো আঙুলে এবং কিছু রক্ত লাগাবে ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে| এরপর বাকী রক্ত বেদীর চারদিকে ঢেলে দেবে| 21 এবার বেদী থেকে একটু রক্ত তুলে নাও এবং একটি বিশেষ অভিষেকের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে হারোণ ও তার পুত্রদের ওপর ও তাদের পোশাকের ওপর ছিটিয়ে দেবে| এতে বোঝা যাবে য়ে হারোণ ও তার পুত্রদের পোশাকগুলি প্রভুর কাছে উত্সর্গীকৃত| 22 “এরপর সেই মেষের চর্বি ছাড়িয়ে নেবে| (এটা সেই ছাগল বা মেষ য়েটা হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেকের সময় ব্যবহৃত হয়েছে|) বলি দেওয়া ছাগলের লেজের এবং শরীরের ভেতরের চর্বি ছাড়িয়ে নেবে| যকৃত্ ও মুত্রগ্রন্থীর ওপরের চর্বি এবং ডান পায়ের চর্বিও সংগ্রহ করবে| 23 এবার প্রভুর সামনে রাখার জন্য খামিরবিহীন রুটি এবং তেলে ভাজা পিঠে ভর্তি ঝুড়িটিকে আনবে| ঝুড়ি থেকে একটি রুটি, একটি তেলেভাজা পিঠে ও একটি ছোট সরুচাক্লী পিঠে তুলে নেবে| 24 এই জিনিসগুলি হারোণ ও তার পুত্রদের দেবে এবং ওদের বলবে এইগুলি হাতে নিতে এবং প্রভুর সামনে সেগুলি দোলাতে| এটা হবে দোলনীয় নৈবেদ্য| 25 এবার এই জিনিসগুলি তাদের কাছ থেকে নিয়ে নাও এবং তাদের বেদীর ওপর রাখো এবং এইগুলি মেষের সঙ্গে পুড়িয়ে দাও| এটি একটি হোমবলি| এর গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 26 “এরপর বলি দেওয়া মেষটির বক্ষ কেটে নেবে| (হারোণের মহাযাজকের পদে অভিষেক উত্সবে এই মেষটিকে ব্যবহার করা হয়েছিল|) মেষটির বক্ষ প্রভুর সামনে দোলনীয় নৈবেদ্যর মত দোলাও এবং তারপরে রেখে দাও| এটি তোমার খাবার জন্য থাকবে| 27 হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেকের শিষ্টাচারে ব্যবহৃত ছাগলের পা ও স্তন এই বিশেষ অঙ্গ দুটি পবিত্র হল| এবার ঐ দুটি অঙ্গ হারোণ ও তার পুত্রদের দিয়ে দেবে| 28 এরপর থেকে সর্বদা ইস্রায়েলের জনগণ প্রভুকে যাজকের মাধ্যমে ঐ বিশেষ অঙ্গ দুটি উত্সর্গ করবে| তারা যখন যাজককে ঐ অঙ্গ দুটি দেবে তা হবে প্রভুকে দেওয়ারই সমান| 29 “বিশেষভাবে তৈরী করা বিশেষ পোশাকগুলো হারোণের জন্য তৈরী করা হলেও সেগুলো যত্ন করে রেখে দেবে| কারণ হারোণের পর য়ে মহাযাজক হবে সে ঐ পোশাকগুলো পরেই প্রভুর সেবা করবে| 30 হারোণের পর তার ছেলেদের মধ্যে থেকেই একজন মহাযাজকের দায়ভার সামলাবে| সে যখন সমাগম তাঁবুতে পবিত্র স্থানের সেবায নিযোজিত হবে তখন সে সাতদিন ঐ পোশাকগুলোই পরবে| 31 “হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেক উত্সবে ব্যবহৃত মেষের মাংস সেদ্ধ কর| পবিত্র স্থানেই ঐ মাংস রান্না হবে| 32 সমাগম তাঁবুর সামনের দরজায় বসে হারোণ ও তার পুত্ররা ঐ রান্না করা মাংস খাবে| ঝুড়ির রুটি দিয়ে তারা মাংস খাবে| 33 এই পদ্ধতিতে তাদের পাপমোচন হবে এবং তারা প্রাযশ্চিত্তের মাধ্যমে যাজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে| আর কাউকে ওগুলো খেতে দেওয়া হবে না, কারণ সেগুলি পবিত্র| 34 যদি কোন খাবার রুটি বা মাংস অবশিষ্ট থাকে তাহলে পরদিন সকালে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলতে হবে| কেউ এ খাবার খাবে না কারণ এই খাবার বিশেষ উপায়ে বিশেষ সময়ে খেতে হয়| 35 “আমার আদেশ মতো তুমি হারোণ ও তার পুত্রদের এগুলি করাবে| আমি যা যা বলেছি তুমি তাদের জন্য ঠিক তাই করবে| তাদের যাজক পদে অভিষেকের শিষ্টাচার সাত দিন ধরে চলবে| 36 সাতদিন ধরে তুমি প্রত্যেকদিনে একটি করে বলদ বলি দেবে| হারোণ ও তার পুত্রদের পাপমোচনের জন্য এই উপায় অবলম্বন করতে হবে| এই প্রাযশ্চিত্ত বেদীকে পূণ্য করার জন্য করতে হবে| এবং বেদীকে পবিত্র করার জন্য জলপাইযের তেল ঢালবে| 37 তুমি সাত দিন ধরে প্রায়শ্চিত্ত করে সাতদিন ধরে বেদীকে পূণ্য ও পবিত্র করে তুলবে| সে সময় বেদীটি অতি পবিত্র স্থান হয়ে উঠবে| বেদীর সংস্পর্শে যা আসবে তাই-ই পবিত্র হয়ে যাবে| 38 “প্রত্যেকদিন তুমি বেদীতে কিছু না কিছু নৈবেদ্য দেবে| তোমাকে এক বছর বয়সের দুটো মেষ বলি দিতেই হবে| 39 একটা মেষকে সকালে ও অন্যটিকে সন্ধ্যায় বলি দেবে| 40 যখন তুমি প্রথম মেষটিকে বলি দেবে তখন তার সঙ্গে এক পোয়া খাঁটি জলপাই তেল আর তিন পোয়া দ্রাক্ষারসের সঙ্গে আট বাটি ভাল গমের আটাও উত্সর্গ করো| 41 এবার দ্বিতীয মেষটি গোধূলি বেলায বলি দেবে| এটির শস্য নৈবেদ্য এবং এটির পেয নৈবেদ্য হবে সকালের নৈবেদ্যর মতোই| এটা হবে একটি সুগন্ধ সৌরভ, প্রভুকে নিবেদিত একটি হোমবলি| এবং প্রভু তা নিঃশ্বাসে গ্রহণ করবেন এবং তার গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 42 “প্রভুর প্রতিদিনের নৈবেদ্যগুলোকেই পুড়িয়ে ফেলতে হবে| সমাগম তাঁবুর দরজাতেই এটা করবে| প্রভুকে নৈবেদ্য দেবার সময় সর্বদা এটাই করবে| আমি, প্রভু তোমাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ওখানেই দর্শন দেব| 43 ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করব ঐ স্থানেই এবং আমার মহিমা ঐ স্থানকে পবিত্র করে তুলবে| 44 “তাই সমাগম তাঁবুকে আমি পবিত্র করে তুলব এবং বেদীকেও পবিত্র করে তুলব| হারোণ ও তার পুত্ররা যাতে আমাকে যাজক হয়ে সেবা করতে পারে তার জন্য আমি ওদেরও পবিত্র করে তুলব| 45 ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গেই আমি থাকব| আমিই হব তাদের ঈশ্বর| 46 লোকরা জানবে আমিই তাদের প্রভু এবং ঈশ্বর| তারা জানতে পারবে য়ে আমিই ‘সেই জন’ য়ে তাদের নেতৃত্ব দিয়ে মিশর থেকে বের করে এনেছে তাই আমি তাদের মাঝেই বাস করব| আমিই তাদের প্রভু, আমিই তাদের ঈশ্বর|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, “বাবলা কাঠের একটা বেদী তৈরী করবে| ধূপদান হিসাবে এই বেদী ব্যবহার করবে| 2 বেদীটি হবে চারকোণা| বেদীর দৈর্য়্ঘ ও প্রস্থ হবে 1 হাত করে এবং উচ্চতা হবে 2 হাত| বেদীর এই শৃঙ্গগুলি বেদীর সঙ্গে একটি অখণ্ড টুকরো হবে| 3 ওটিকে খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দাও - এর উপরিভাগে, বেদীকে ঘিরে তার চার ধারে এবং বেদীর চারধারে তার শৃঙ্গগুলি সোনার নিকেল দাও| 4 সোনার নিকেলের নীচে বেদীর বিপরীত দুদিকে দুটো সোনার আংটা লাগাবে| এই আংটায দণ্ড ঢুকিয়ে বেদীকে বয়ে নিয়ে যাওয়া হবে| 5 দণ্ডও বাবলা কাঠের হবে এবং দণ্ডকে সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে| 6 ধূপবেদীটি বিশেষ পর্দার সামনে বসাও| ঐ পর্দাটি সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর য়ে আচ্ছাদন আছে তার সামনে থাকবে| এটা সেই স্থান সেখানে আমি তোমাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করব| 7 “প্রতি সকালে হারোণ যখন বাতিগুলো ঠিক করতে আসবে তখন সে বেদীতে সুগন্ধি ধূপ জ্বালাবে| 8 সন্ধ্যায যখন সে প্রদীপ জ্বালাতে আসবে তখনও তাকে বেদীতে ধূপ জ্বালাতে হবে| এখন থেকে, এই ধূপ নিয়মিতভাবে প্রভুর সামনে অর্পণ করতে হবে| 9 এই বেদীর ওপর অন্য কোন ধূপ অথবা হোমবলি উত্সর্গ করবে না| কোন রকম শস্য নৈবেদ্য ও পেয় নৈবেদ্যর জন্য এই বেদী ব্যবহার করা হবে না| 10 “বছরে একবার হারোণ প্রভুর প্রতি একটি বিশেষ পশু উত্সর্গ করবে| মানুষের পাপমোচনের উদ্দেশ্যে সে পাপ বলির রক্ত দিয়ে প্রাযশ্চিত্ত করবে| পাপমোচনের নৈবেদ্যর রক্ত দিয়ে এই প্রাযশ্চিত্ত করতে হবে| এটি প্রভুর কাছে সবচেয়ে পবিত্র| এই দিনটি চিহ্নিত হবে প্রাযশ্চিত্তের দিন হিসেবে| এই দিনটি হবে প্রভুর কাছে একটি বিশেষ দিন|” 11 প্রভু মোশিকে বললেন, 12 “ইস্রায়েলের জনসংখ্যা গণনা করো তাহলে বুঝতে পারবে কতজন ইস্রায়েলে বসবাস করে| তাদের প্রত্যেকে প্রভুকে কিছু না কিছু অর্থ দান করবে| যদি প্রত্যেকে এটা মেনে চলে তাহলে তাদের জীবনে কোন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে না| 13 এই লোকদের প্রত্যেককে আমলাতান্ত্রিক মান অনুযায়ী1/2 শেকল দিতে হবে| এই আমলাতান্ত্রিক শেকলের ওজন হল 20 গেরা| এই 1/2 শেকল প্রভুর প্রতি একটি নৈবেদ্য| 14 কুড়ি বছর হলে তাকে গণনার আওতায় আনা হবে| এবং গণনার আওতায় চলে আসা প্রত্যেকে এই নৈবেদ্য দেবে প্রভুর প্রতি| 15 বড় লোকরা 1/2 শেকলের বেশী দেবে না আবার গরীবরা 1/2 শেকলের কম দেবে না| তাদের জীবনের প্রাযশ্চিত্তের জন্য প্রত্যেককে অবশ্যই সমপরিমাণ নৈবেদ্য প্রভুকে অর্পণ করতে হবে| 16 প্রায়শ্চিত্ত নৈবেদ্যর সমস্ত অর্থ জমা কর এবং ঐ অর্থ সমাগম তাঁবুর যাবতীয় খরচের জন্য ব্যবহার কর| এই নৈবেদ্য এরকমভাবে প্রভুকে তাঁর লোকদের কথা মনে রাখাবার জন্য| তারা তাদের নিজেদের জীবনের জন্য মূল্য দেবে|” 17 প্রভু মোশিকে বললেন, 18 “পিতলের একটি পায়া তৈরী করে তার ওপর একটি পিতলের পাত্র বসাবে| এই পাত্রে অন্য সব কিছু পরিষ্কার করে ধোযা হবে| সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে ঐ পাত্র বসিয়ে তাতে জল ভর্তি করবে| 19 হারোণ ও তার পুত্ররা ঐ পাত্রের জলে তাদের হাত পা ধোবে| 20 যখনই তারা সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করবে অথবা প্রভুর কাছে নৈবেদ্য পোড়াবার জন্য বেদীর কাছে আসবে তখনই তাদের ঐ পাত্রের জল দিয়ে নিজেদের পরিষ্কার করতে হবে যাতে তারা মারা না যায| এটা মেনে চললে তারা মারা যাবে না| 21 যদি তারা মরতে না চায় তাহলে এই বিধি তাদের মেনে চলতে হবে| এই বিধি হারোণ এবং তার উত্তরপুরুষদের চিরকাল মেনে চলতে হবে|” 22 প্রভু মোশিকে বললেন, 23 “সুগন্ধি মশলা খুঁজে আনো| 12 পাউণ্ড ওজনের তরল মস্তকি, 6 পাউণ্ড ওজনের সুগন্ধি দারুচিনি, 6 পাউণ্ড ওজনের সুগন্ধি এবং 24 বারো পাউণ্ড ওজনের সূক্ষ্ম ধরণের দারুচিনি নিয়ে এসো| এগুলিকে প্রচলিত শেকলের মান অনুযায়ীওজন কর| 1 গ্য়ালন জলপাইযের তেলও এনো| 25 “সুগন্ধি অভিষেকের তেল তৈরী করবার জন্য এই জিনিসগুলি বিশেষজ্ঞের মতো মেশাও| 26 সমাগম তাঁবুর ওপর ও সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর ঐ তেল ছিটিয়ে দাও| এর ফলে ঐ জিনিসগুলোর বিশেষত্ব প্রকাশ পাবে| 27 টেবিল এবং টেবিলের ওপর রাখা প্লেটে ওই তেল ছিটোবে| দীপদান ও তার সকল পাত্র ও ধূপবেদীতেও ঐ তেল ছিটোবে| 28 হোমবলির বেদীতে এবং হোমবলির জন্য ব্যবহৃত সমস্ত পাত্রে এবং হাত পা ধোযার সেই পাত্র ও পাত্রের নীচে রাখা পায়াতেও ঐ তেল ছিটিয়ে দাও| 29 প্রভুর সেবার জন্য এই সমস্ত জিনিসগুলোকে তোমাকে পবিত্র করে তুলতে হবে| তাহলেই তারা পবিত্র হয়ে উঠবে| এই জিনিসগুলোকে অন্য কিছু স্পর্শ করলে সেগুলোও পবিত্র হয়ে উঠবে| 30 “যাজকরূপে বিশেষ উপায়ে আমাকে সেবার জন্য হারোণ ও তার পুত্রদের গায়েও ঐ তেল ছিটিয়ে দেবে| 31 ইস্রায়েলের লোকদের বলো য়ে এই অভিষেকের তেল হল পবিত্র| ইস্রায়েলের লোকদের বলো য়ে এই তেল অবশ্যই তোমাদের বংশ পরম্পরায একমাত্র আমার জন্যই ব্যবহৃত হবে| 32 সাধারণ সুগন্ধি হিসেবে কেউ য়েন এই তেল ব্যবহার না করে| এই সূত্র অনুসারে অন্য কোন তেল তৈরী করবে না| এই তেল পবিত্র এবং তোমাদের কাছে এর বিশেষ অর্থ আছে| 33 যদি কেউ এই পবিত্র তেল সাধারণ সুগন্ধি হিসাবে তৈরী করে অথবা এটি কারো ওপর আরোপ করে, তার লোকদের থেকে তাকে বিতাড়িত করে দেওয়া হবে|” 34 এরপর প্রভু মোশিকে বললেন, “এই সুগন্ধি মশলাগুলো জোগাড় করে আনো: ধুনো, নখী, গুগ্গুল, কুন্দুরু| মনে রাখবে প্রত্যেকটি মশলার পরিমাণ হবে সমান| 35 পরিষ্কার লবনের সঙ্গে এই সুগন্ধি মশলাগুলো মেশাও এবং সুগন্ধি তৈরী করার মতো সুগন্ধি ধূপ বানাও| এই প্রক্রিযা ধূপকে খাঁটি এবং পবিত্র করবে| 36 খানিকটা পাউডারের মতো ধূপের গুঁড়ো করে নিয়ে সেই মিহি করা ধূপের গুঁড়ো য়ে সমাগম তাঁবুতে আমি তোমাদের দর্শন দেব তার মধ্যে রাখা সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে রাখবে| বিশেষ প্রযোজনেই শুধুমাত্র এই ধূপের গুঁড়ো ব্যবহার করবে| 37 প্রভুর জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এর ব্যবহার হবে না| 38 সুগন্ধি ধূপের গন্ধ অনুভব করতে কেউ যদি নিজের জন্য এই ধূপের গুঁড়ো নিয়ে যায তাহলে সে সমাজচ্য়ূত হবে|”
1 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “আমার বিশেষ কাজের জন্য আমি যিহূদা বংশীয় একজনকে নির্বাচন করেছি| তার নাম হল বত্সলেল| বত্সলেল হল হূরের পৌত্র এবং উরির পুত্র| 3 আমি বত্সলেলকে ঈশ্বরের আত্মা, পটুতা, দক্ষতা এবং সমস্ত রকমের কলা ও শিল্পের জ্ঞান দিয়ে ভরে দিয়েছি| 4 বত্সলেল একজন ভাল শিল্পকার এবং সে সোনা, রূপো ও পিতল থেকে নানা জিনিসপত্র তৈরী করতে পারে| 5 বত্সলেল নানা মণি মাণিক্য কাটতে ও তাতে খোদাই করে সুন্দর অলঙ্কার তৈরী করতে পারে| সে কাঠের শিল্পকর্মেও পারদর্শী| বত্সলেল সব ধরণের কাজ করতে পারে| 6 বত্সলেলের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি অহলীযাবকে নির্বাচন করেছি| অহলীযাব হল দান পরিবারগোষ্ঠীর অহীষামকের পুত্র| আমি বাকী কারিগরদের সব রকম দক্ষতা দিয়েছি যাতে ওরা তোমাকে দেওয়া আমার নির্দেশগুলো পালন করতে পারে: 7 সমাগম তাঁবু, সাক্ষ্যসিন্দুক, সাক্ষ্য সিন্দুকের ওপরের আচ্ছাদন এবং সমাগম তাঁবুর সমস্ত আসবাবপত্র| 8 টেবিল ও তার ওপর রাখা যাবতীয় সব কিছু, আনুষঙ্গিক অংশসহ খাঁটি সোনার বাতিস্তম্ভটি এবং ধূপবেদী| 9 হোমবলির বেদী এবং বেদীতে ব্যবহৃত জিনিসপত্র| হাত পা ধোযার পাত্র ও পাত্রের নীচের পায়া| 10 যাজক হারোণের জন্য বোনা বিশেষ পোশাক পরিচ্ছদ এবং হারোণের পুত্ররা যখন যাজকের কাজ করবে তখন তাদের জন্য বোনা বিশেষ পোশাক পরিচ্ছদ| 11 সুগন্ধি অভিষেকের তেল, পবিত্র স্থানে ব্যবহারের সুগন্ধি ধূপ|আমি তোমাকে ঠিক য়েভাবে নির্দেশ দিয়েছি ঠিক সেইভাবেই তাদের এই জিনিসগুলো তৈরী করতে হবে|” 12 প্রভু মোশিকে বললেন, 13 “ইস্রায়েলের লোকদের এই কথাগুলি বলো: তোমরা অবশ্যই আমার বিশ্রামের দিন বিধি অনুসারে পালন করবে| তোমরা এটা অবশ্যই করবে কারণ প্রজন্মের পর প্রজন্ম এটা তোমার এবং আমার মধ্যে একটি প্রতীক চিহ্ন হিসাবে বিরাজ করবে| এই চিহ্ন দেখাবে য়ে, আমিই প্রভু, তোমাদের পবিত্র করেছি| 14 “এই বিশ্রামের দিনকে একটি বিশেষ দিনের মর্য়াদা দেবে| যদি কেউ এই বিশেষ বিশ্রামের দিনকে অন্য একটি সাধারণ দিনের মতো পালন করে তাহলে তাকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে| যদি কেউ এই বিশ্রামের দিনেও কাজ করে, তাহলে তাকে তার লোকদের থেকে বিতাড়িত করতে হবে| 15 কাজ করার জন্য সপ্তাহের বাকি ছয় দিন নির্দিষ্ট থাকবে কিন্তু সপ্তম দিনটি হবে বিশেষ বিশ্রামের দিন| এই দিনটি তোলা থাকবে প্রভুর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের দিন হিসেবে| এই বিশেষ বিশ্রামের দিনে কেউ কাজ করলে তার মৃত্য়ু অনিবার্য়| 16 বিশ্রামের দিনটিকে সর্বদা মনে রেখে ইস্রায়েলের মানুষ বিশেষ দিন হিসেবে পালন করবে| তারা সর্বদা এটা মেনে চলবে| এটা হল আমার ও তাদের মধ্যে এক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত| 17 বিশ্রামের দিনটি একটি চিরস্থায়ী চিহ্ন হিসেবে বেঁচে থাকবে আমার ও ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে| প্রভু সপ্তাহের ছয় দিন পরিশ্রম করে এই স্বর্গ ও মর্য়্ত তৈরী করেছেন| কিন্তু সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম ও অবসরের মধ্যে কাটিযেছেন|” 18 সীনয় পর্বতে এরপর প্রভু মোশির সঙ্গে কথোপকথন শেষ করলেন| তারপর তিনি বন্দোবস্ত লেখা দুটো সমান্তরাল পাথর ফলক মোশিকে দিলেন| ঈশ্বর নিজের হাতে ঐ দুই পাথর ফলকে লিখেছেন|
1 পর্বত থেকে মোশির নামতে দেরী হচ্ছে দেখে লোকরা উদ্বিগ্ন হয়ে হারোণকে ঘিরে ধরল| তারা বলল, “মোশি আমাদের পথ দেখিয়ে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছে কিন্তু আমরা তো এখান থেকে কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না য়ে মোশির কি হয়েছে| সুতরাং এসো, আমরা আমাদের নেতৃত্ব দেবার জন্য দেবতাদের তৈরী করি|” 2 হারোণ তখন ঐ লোকদের বলল, “তোমরা আমার কাছে তোমাদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের কানের সোনার দুল এনে দাও|” 3 সুতরাং সবাই তাদের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাদের কানের দুল এনে হারোণকে দিল| 4 হারোণ সবার কাছ থেকে সোনার দুলগুলো নিয়ে সেগুলো গলিযে একটি বাছুরের মূর্তি গড়ল| হারোণ বাটালি দিয়ে বাছুরের মূর্তি গড়ল এবং সোনা দিয়ে মূর্তিটির আচ্ছাদন তৈরী করল|তখন লোকরা বলল, “হে ইস্রায়েল, এই তোমার দেবতা যিনি তোমাকে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছেন|” 5 সব দেখার পর হারোণ বাছুরের মূর্তির সামনে একটি বেদী তৈরী করল| এরপর হারোণ ঘোষণা করে জানাল, “আগামীকাল প্রভুর সম্মানার্থে একটি বিশেষ চড়ুই ভাতি উত্সব পালন করা হবে|” 6 পরদিন খুব ভোরে লোকরা উঠে কিছু পশুকে মেরে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য দিল| তারপর তারা বসে পাত পেড়ে খাওয়া দাওযা করে আনন্দ স্ফূর্তিতে মেতে উঠল| 7 ঠিক সেই সমযে প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার লোকরা, যাদের তুমি মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছো, তারা মারাত্মক পাপ কাজে লিপ্ত হয়েছে| 8 আমার নির্দেশ সম্পূর্ণরূপে অগ্রাহ্য করে সোনা গলিযে তারা একটি বাছুরের মূর্তি তৈরী করেছে| তারা গলা সোনা দিয়ে তৈরী একটি বাছুরের মূর্তিকে পূজো করছে এবং তাকে নৈবেদ্য দিচ্ছে| আবার তারা বলছে, ‘ইস্রায়েল, এই হচ্ছে তোমার দেবতা যিনি তোমাকে মিশর থেকে বের করে এনেছেন|” 9 প্রভু মোশিকে বললেন, “আমি ঐ লোকদের ভাল করে চিনি| ওরা ভীষণ জেদী ও উদ্ধত| 10 সুতরাং আমাকে একা থাকতে দাও| আমি তাদের ওপর ক্রুদ্ধ, আমি তাদের ধ্বংস করব| তারপর আমি তোমাকে দিয়ে একটা বড় জাতির সৃষ্টি করব|” 11 কিন্তু মোশি বিনযের সঙ্গে, প্রভু তার ঈশ্বরকে অনুরোধ করল, “আপনি ক্রোধ দিয়ে আপনার লোকদের ধ্বংস করবেন না| আপনি আপনার শক্তি ও পরাক্রম দিয়ে ঐ মানুষদের মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন| 12 কিন্তু আপনি যদি ওদের ধ্বংস করেন তাহলে মিশরীয়রা বলতে পারে য়ে, ‘প্রভু নিজের লোকদের জন্য খারাপ কিছু করার পরিকল্পনা করেছিলেন| তাই তিনি ঐ লোকদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে গিয়েছিলেন| তিনি চেযেছিলেন পর্বতের ওপর নিয়ে গিয়ে তাদের হত্যা করতে| তিনি চেযেছিলেন তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে| তাই আপনি তাদের ওপর রাগ করবেন না| দযা করে আপনার মনকে বদলান| আপনার জনগণকে ধ্বংস করবেন না| 13 আপনার দাসগণ অব্রাহাম, ইসহাক এবং যাকোবকে স্মরণ করুন| এবং আপনি তাদের কাছে নিজের নামে শপথ নিয়ে বলেছিলেন: ‘আমি প্রতিজ্ঞা করছি য়ে আকাশের অসংখ্য তারার মতো তোমাদের বংশ বৃদ্ধি হবে| এই দেশ তোমাদের বংশধরদের দিয়ে দেব| ওরা এখানে চিরকালের জন্য থাকবে|”‘ 14 তাই প্রভু তাঁর মন পরিবর্তন করলেন এবং তাঁর লোকদের ধ্বংস করবার ভীতি প্রদর্শন পালন করলেন না| 15 তখন মোশি ঘুরে দাঁড়াল এবং পর্বতের নীচে নামল| তার হাতে ছিল বন্দোবস্ত লেখা দুই পাথর ফলক| ঐ দুই পাথর ফলকের দুপাশেই লেখা ছিল প্রভুর নির্দেশগুলি| 16 ঈশ্বর নিজের হাতে ঐ দুই পাথর ফলক তৈরী করে নিজেই ঐ নির্দেশগুলি লিখেছেন| 17 যিহোশূয় শিবিরের গভীরে লোকজনের কোলাহল শুনতে পেল এবং মোশিকে বলল, “মনে হচ্ছে শিবিরের লোকরা যুদ্ধ করছে|” 18 উত্তরে মোশি বলল, “এই কোলাহল কোন যুদ্ধ জয়ের উল্লাস নয় আবার পরাজয়ের কান্নাও নয়| আমি কিন্তু গান বাজনা শুনতে পাচ্ছি|” 19 মোশি সেই শিবিরের কাছে গেল| সে দেখল সোনার বাছুরের মূর্তিটি এবং লোকরা তা নিয়ে নাচানাচি করছে| এসব দেখে মোশি রেগে গেল, রাগের চোটে হাত থেকে পাথর ফলকগুলি নীচে ফেলে দিল এবং পর্বতের পাদদেশে তাদের ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিল| 20 মোশি সেই সোনার বাছুরের মূর্তিকে আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দিল| তারপর আগুনে সেই মূর্তি গলে গেলে সেই ছাই জলে মিশিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের সেই জল পান করতে বাধ্য করল| 21 মোশি হারোণকে বলল, “এই লোকরা তোমার সঙ্গে কি করেছিল য়ে তুমি ওদের এমন পাপের দিকে ঠেলে দিলে?” 22 হারোণ উত্তর দিল, “মহাশয, রাগ করো না| তুমি তো জানো এরা সব সময়ই ভুল পথে পা বাড়ায| 23 ওরা আমায বলেছিল, ‘মোশি আমাদের মিশর দেশ থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বের করে আনলেও এখন কিন্তু তার কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না| তাই আমাদের জন্য এমন দেবতাসমূহ তৈরী করে দাও যারা আমাদের নেতৃত্ব দেবে|” 24 তখন আমি ওদের বলেছিলাম, ‘যদি তোমাদের কোন সোনার দুল থাকে তাহলে আমাকে সব দাও|’ ওরা আমাকে সোনার দুল দিলে আমি সেগুলো আগুনে ফেলে দিলে আগুন থেকে ঐ বাছুরটি বের হয়ে এলো|” 25 মোশি দেখল হারোণ লোকদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিযেছে এবং তারা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছে| লোকরা বন্য হয়ে উঠেছে| এবং তাদের সমস্ত শত্রুরা এই বোকামী দেখতে পেয়েছে| 26 তাই মোশি সেই শিবিরের প্রবেশ দ্বারে দাঁড়িয়ে বলে উঠল, “কেউ যদি প্রভুকে অনুসরণ করতে চাও তাহলে আমার কাছে এসো|” এবং লেবি বংশজাত লোকরা সবাই দৌড়ে মোশির কাছে চলে এল| 27 তখন মোশি তাদের বলল, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর কি বলেন তা আমি তোমাদের বলব: ‘প্রত্যেকে তার নিজের নিজের তরবারি হাতে তুলে নিয়ে শিবিরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে গিয়ে সমস্ত লোকদের হত্যা করে তাদের শাস্তি দাও| প্রত্যেকে তার বন্ধু ভাই এবং প্রতিবেশীকে হত্যা করবে|” 28 লেবি বংশজাত প্রত্যেক মানুষ মোশির নির্দেশ পালন করল| সেই দিন অন্তত 3000 ইস্রায়েলবাসীকে হত্যা করা হয়েছিল| 29 তখন মোশি বলল, “আজ থেকে প্রভু তোমাদের তাঁর সেবার জন্য উত্সর্গ করেছেন এবং আজ তিনি তোমাদের আশীর্বাদ করেছেন কারণ তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের পুত্রদের এবং ভাইদের বিরুদ্ধে ঝগড়া করেছ|” 30 পরদিন সকালে মোশি সবাইকে বলল, “তোমরা মারাত্মক পাপ কাজ করেছো কিন্তু এখন আমি প্রভুর কাছে যাব এবং চেষ্টা করব যাতে তিনি তোমাদের এই পাপকে ক্ষমা করে দেন|” 31 সুতরাং মোশি আবার প্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে বলল, প্রভু অনুগ্রহ করে শুনুন| ওরা সোনার দেবতা তৈরী করে মারাত্মক পাপ করেছে| 32 এখন আপনি ওদের এই পাপকে ক্ষমা করে দিন| যদি আপনি ওদের ক্ষমা না করেন তাহলে আপনার লেখা পুস্তকথেকে আমার নাম মুছে দিন|” 33 প্রভু মোশিকে বললেন, “য়ে আমার বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছে আমি কেবল তার নামই আমার পুস্তক থেকে কেটে ফেলব| 34 তাই এখন তুমি নীচে গিয়ে লোকদের য়ে দেশে নিয়ে য়েতে বলেছি সেই দেশে নিয়ে যাও| আমার দূত তোমাদের আগে পথ দেখাতে দেখাতে যাবে, পাপীর যখন বিনাশের সময় হবে তখন সে শাস্তি পাবেই|” 35 তাই প্রভু লোকদের ওপর একটি মহামারী ঘটালেন কারণ তারা হারোণকে বাছুরের মূর্তি তৈরী করতে বাধ্য করেছিল|
1 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি এবং তোমার লোকদের, যাদের তুমি মিশর থেকে এনেছিলে তাদের অবশ্যই এখান থেকে চলে য়েতে হবে| অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবকে আমি য়ে দেশ দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সেই দেশে চলে যাও| আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম য়ে আমি ওদের পরবর্তী উত্তরপুরুষদের ঐ দেশ দিয়ে যাব| 2 তাই আমি তোমার আগে একজন দূত পাঠাব এবং কনানীয, ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের পরাজিত করে ঐ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেব| 3 তোমরা সেই ভাল দেশে যাও সেখানে সব কিছু সুন্দর| কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে যাব না| তোমরা ভীষণ একগুঁযে ও জেদী| তোমরা আমাকে ক্রুদ্ধ করেছ| যদি আমি তোমাদের সঙ্গে যাই তাহলে হয়তো আমি তোমাদের ধ্বংস করতে পারি|” 4 এই দুঃসংবাদ শোনার পর লোকরা ভীষন হতাশ হয়ে পড়ল এবং তারা মণিমাণিক্য ব্যবহার করা বন্ধ করে দিল| 5 কেন? কারণ মোশিকে প্রভু বলেছেন, “ইস্রায়েলবাসীকে বলো, “তোমরা একগুঁয়ে জেদী প্রকৃতির মানুষ| খুব কম সমযের জন্যও আমি যদি তোমাদের সঙ্গে ভ্রমণ করি তাহলে তোমাদের বিনাশ হতে পারে| সুতরাং যখন আমি স্থির করব ইস্রায়েলকে কি করতে হবে তখন তোমরা নিজেদের দেহ থেকে অলঙ্কারাদি খুলে ফেল|” 6 সুতরাং ইস্রায়েলবাসীরা হোরেব পর্বত থেকে তাদের যাত্রাপথে নিজেদের অলঙ্কারাদি খুলে ফেলল| 7 মোশি শিবিরের একটু দূরে অন্য একটি তাঁবু স্থাপন করল| মোশি এই তাঁবুর নাম দিল “সমাগম তাঁবু|” প্রভুকে কেউ যদি কিছু জিজ্ঞাসা করতে চায তাহলে সে শিবিরের বাইরে ঐ সমাগম তাঁবুতে য়েতে পারে| 8 যখন খুশি মোশি ঐ সমাগম তাঁবুতে য়েত| সবাই তাকে লক্ষ্য করত| সকলে নিজস্ব তাঁবুর দরজায় দাঁড়িয়ে মোশির সমাগম তাঁবুর অভ্যন্তরে যাওয়া দেখতো| 9 মোশি যখনই ঐ সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করতো তখনই তাঁবুর দরজায় মেঘস্তম্ভ নেমে আসত এবং প্রভু তখন মোশির সঙ্গে কথা বলতেন| 10 লোকরা সমাগম তাঁবুর দরজায় মেঘস্তম্ভ দেখতে পেলেই তারা নিজের নিজের তাঁবুর মধ্যে হাঁটু গেড়ে ঈশ্বরের উপাসনা করতো| 11 এভাবেই প্রভু মোশির সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলত| প্রভু বন্ধুর মতো মোশির সঙ্গে কথা বলতেন| প্রভুর সঙ্গে কথা শেষ করার পর মোশি শিবিরে ফিরে য়েত কিন্তু মোশির পরিচারক (দাস), নূনের পুত্র যিহোশূয় তাঁবুর বাইরে বেরোত না| 12 মোশি প্রভুকে বলল, “আপনি এই লোকদের নেতৃত্ব দিতে বলেছিলেন কিন্তু আমার সঙ্গে আপনি কাকে পাঠাবেন তা কিন্তু বলেন নি| আপনি বলেছেন, ‘আমি তোমাকে ভাল করে চিনি এবং তোমার ওপর আমি সন্তুষ্ট|’ 13 আমি যদি সত্যিই আপনাকে সন্তুষ্ট করে থাকি তাহলে আমাকে আপনার শিক্ষা ও জ্ঞান দিন| আমি আপনাকে জানতে চাই| তাহলে আমি আপনাকে বরাবর সন্তুষ্ট করতে পারব| মনে রাখবেন য়ে তাদের সবাই আপনার লোক|” 14 প্রভু উত্তরে বললেন, “আমি নিজে তোমার সঙ্গে যাব, আমি তোমাকে বিশ্রাম দেব|” 15 তখন মোশি প্রভুকে বললেন, “আপনি যদি আমাদের সঙ্গে না যান তাহলে আমাদের এই স্থান থেকে সরাবেন না| 16 তাছাড়া, আমরা কি করে বুঝব আপনি আমার এবং আপনার লোকদের ওপর সন্তুষ্ট? আপনি যদি আমাদের সঙ্গে যান তাহলে বুঝব আপনি আমাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন| আপনি যদি আমাদের সঙ্গে না আসেন, তাহলে আমার এবং আপনার লোকদের মধ্যে এবং পৃথিবীর অন্য জাতির মধ্যে আর কোন পার্থক্য থাকবে না|” 17 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “বেশ আমি তোমার ইচ্ছা পূরণ করব| কারণ আমি তোমার ওপর সন্তুষ্ট এবং আমি তোমাকে ভাল করে জানি|” 18 তখন মোশি বলল, “দযা করে আপনার মহিমা আমায় দেখান|” 19 তখন প্রভু উত্তর দিলেন, “আমি আমার সমস্ত গুণাবলীকে তোমার সামনে দিয়ে গমণ করাবো| আমিই প্রভু এবং তোমরা যাতে শুনতে পাও সেইজন্য আমি আমার নাম ঘোষণা করব| কারণ আমার যাকে খুশী আমি আমার করুণা ও ভালবাসা দেখাতে পারি| 20 কিন্তু তোমরা আমার মুখ দেখতে পাবে না| আমাকে দেখার পর কেউ বাঁচতে পারবে না| 21 “আমার খুব কাছেই একটি পাথর আছে তোমরা সেই পাথরের ওপর দাঁড়াতে পারো| 22 ঐ স্থান দিয়েই আমার মহিমা প্রকাশ পাবে| আমি তোমাদের ঐ পাথরের একটি বিশাল ফাটলে রেখে দেব এবং আমি যখন ওখান দিয়ে যাব তখন আমার হাত তোমাদের ঢেকে দেবে| 23 এরপর আমি তোমাদের ওপর থেকে হাত সরিয়ে নেব এবং তোমরা আমার পিছন দিক দেখতে পাবে কিন্তু আমার মুখ দেখতে পাবে না|”
1 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “পূর্ববর্তী দুটি প্রস্তর ফলকের মতো, য়ে দুটি তুমি ভেঙ্গেছিলে আরো দুটি প্রস্তর ফলক তুমি তৈরী কর| প্রথম ফলক দুটিতে য়েসব কথা লেখা হয়েছিল সেইসব কথা আমি আবার এই ফলক দুটিতে লিখব| 2 কাল সকালে প্রস্তুত হয়ে নিও এবং আমার সঙ্গে দেখা করবার জন্য সীনয় পর্বতের চূড়ায় এসো| 3 আর কেউ তোমার সঙ্গে আসবে না| অন্য কাউকে য়েন পর্বতের কোথাও না দেখা যায| এমনকি কোনও পশুর দল বা মেষের পালকেও পর্বতের নীচে চরতে দেওয়া যাবে না|” 4 তাই মোশি প্রথম পাথরের ফলকের মতো আরও দুটি ফলক তৈরী করল| তারপর পরদিন সকালে উঠে সীনয় পর্বতের চূড়ায় গেল| মোশি প্রভুর আদেশ অনুসারে সব কিছু করল| সে পাথরের ফলক দুটি সঙ্গে করে নিয়ে গেল| 5 অতঃপর প্রভু মেঘের মধ্যে মোশির কাছে নেমে এলেন এবং তার সঙ্গে দাঁড়ালেন এবং তাঁর নাম (প্রভুর) ঘোষণা করলেন| 6 প্রভু মোশির সামনে দিয়ে গেলেন এবং বললেন, “যিহোবা, প্রভু হলেন দয়ালু ও করুণাময়| তিনি ক্রোধের ব্যাপারে ধৈর্য়্য়শীল| তিনি পরমস্নেহে পরিপূর্ণ এবং বিশ্বস্ত| 7 হাজার হাজার পুরুষ ধরে প্রভু তাঁর করুণা দেখান| তিনি ভুল কাজ, অবাধ্যতা এবং পাপ ক্ষমা করে দেন| কিন্তু তবু তিনি দোষীদের শাস্তি দিতে ভোলেন না| তিনি কেবলমাত্র দোষীদেরই শাস্তি দেন না, তাদের দণ্ডনীয অপরাধের জন্য তাদের তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষের উত্তরপুরুষদেরও শাস্তি দেন|” 8 তখন মোশি সঙ্গে সঙ্গে হাঁটু গেড়ে বসল ও আভুমি মাথা নত করে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল এবং বলল, 9 “প্রভু, আপনি যদি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হন তাহলে আমাদের সঙ্গে চলুন| আমি জানি আমরা জেদী কিন্তু আমাদের অপরাধ ক্ষমা করে দিন| আমাদের ওপর আপনার নিজের পূর্ণ অধিকার আছে বলে মনে করুন এবং আমাদের গ্রহণ করুন|” 10 তখন প্রভু বললেন, “আমি তোমার লোকদের সঙ্গে এই চুক্তি করি য়ে আমি তোমার লোকদের সামনে এমন সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করব যা ইতিপূর্বে পৃথিবীর কোনও দেশে হয় নি| তখন তোমাদের চারপাশের সমস্ত জাতিসমূহ দেখতে পাবে আমি কত মহান| তারা এইসব আশ্চর্য়্য় জিনিস দেখবে যা আমি তোমাদের জন্য করব| 11 আমি যা আদেশ দিচ্ছি, আজ তা পালন কর তাহলে আমি তোমাদের শত্রুদের তোমাদের দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করব| আমি ইমোরীয়, কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের বিতাড়ন করব| 12 সাবধান! তোমরা যেখানে যাচ্ছো সেখানকার লোকদের সঙ্গে কোনও চুক্তি কোরো না| তাহলে তোমরা বিপদে পড়বে| 13 তাদের বেদী ধ্বংস কর| য়ে পাথরকে তারা পূজো করে তা ভেঙ্গে ফেলো| তাদের পবিত্র দণ্ডগুলি ধ্বংস করো| 14 অন্য কোনও দেবতাকে পূজা করো না কারণ আমার নাম “ঈর্ষা|” আমি হলাম ঈর্ষাপরাযণ ঈশ্বর| 15 “ঐ দেশের লোকদের সঙ্গে কোনও চুক্তি না করার ব্যাপারে সাবধান থেকো| কারণ তোমরা তাদের দেবতাদের পূজো করে এবং তাদের নৈবেদ্য উত্সর্গ করে ব্যভিচার করবে| তারা তাদের নৈবেদ্য ভক্ষণ করতে তোমাদের নিমন্ত্রণ করবে| 16 তোমরা যদি তাদের কন্যাদের পুত্রবধূরূপে গ্রহণ করো তাহলে ঐ মহিলারা তোমাদের পুত্রদের তাদের ঐ দেবতাদের পূজো করাবে এবং তারা তোমাদের পুত্রদের প্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত করে তুলবে| 17 “কোনও মূর্ত্তি তৈরী করবে না| 18 “খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করবে| আমি তোমাদের য়েমন আদেশ দিয়েছিলাম সেই মতো সাতদিন ধরে খামিরবিহীন রুটি খাবে| তোমরা এটা আবীব মাসে করবে কারণ ঐ মাসে তোমরা মিশর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলে| 19 “কোনও নারীর প্রথম গর্ভজাত পুত্র সন্তান হবে আমার| এমনকি গবাদি পশুর অথবা মেষের প্রথমজাত পুরুষশাবকও আমার অধিকারভুক্ত| 20 তোমরা যদি গাধার প্রথমজাত পুরুষশাবককে রাখতে চাও, তবে তোমরা একটি মেষশাবকের বিনিময়ে তা রাখতে পারো| কিন্তু তোমরা যদি ঐ গাধার শাবকটিকে একটি মেষের বিনিময়ে না কেনো তাহলে তোমাদের ঐ গাধার ঘাড় মটকাতে হবে| তোমাদের সমস্ত প্রথমজাত পুত্র সন্তানদের আমার কাছে থেকে ফেরত্ নিতে হবে| কিন্তু কোনও লোকই উপহার ছাড়া আমার কাছে আসবে না| 21 “তোমরা ছয়দিন যাবত্ পরিশ্রম করবে ও সপ্তম দিনে বিশ্রাম নেবে| চাষের বীজ রোপন ও ফসল কাটার সময় তোমরা অবশ্যই বিশ্রাম নেবে| 22 “সাত সপ্তাহের উত্সব পালন করবে| গম কাটার পর প্রথম কাটা ফসলের দানাগুলো এই উত্সবের জন্য ব্যবহার করবে এবং বছরের শেষে ফসল কাটার উত্সব পালন করবে| 23 “বছরে তিনবার তোমাদের সমস্ত লোক সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হবে| 24 “তোমরা যখন তোমাদের দেশে যাবে তখন আমি তোমাদের শত্রুদের সেখান থেকে বিতাড়িত করতে বাধ্য করব| আমি তোমাদের দেশের সীমা বিস্তার করে দেব যাতে তোমরা আরও বেশী জমি পাও| তোমাদের অবশ্যই প্রতি বছরে তিনবার প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের সামনে য়েতে হবে| এবং তখন কেউ তোমাদের দেশ অধিকার করার চেষ্টা করবে না| 25 “যখন তোমরা আমাকে নৈবেদ্য হিসাবে রক্ত উত্সর্গ করবে তখন তার সঙ্গে খামির দেবে না|“নিস্তারপর্বে উত্সর্গীকৃত মাংস পরদিন সকাল পর্য়ন্ত রাখা উচিত্ হবে না| 26 “তোমাদের ক্ষেতের প্রথম ফসল প্রভুকে দেবে| ঐ ফসল প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের গৃহে নিয়ে আসবে|“কখনও কোনও ছাগশিশুকে তার মায়ের দুধ দিয়ে রান্না করবে না|” 27 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমাকে আমি যা বলেছি সব কিছু লিখে রাখো| এইগুলিই হল তোমার এবং ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে চুক্তির দলিল|” 28 মোশি সেখানে প্রভুর সঙ্গে 40 দিন ও 40 রাত বাস করেছিল| মোশি 40 দিন কোন কিছু ভোজন করল না বা জল পান করল না| মোশি দুটি পাথরের ফলকের ওপর চুক্তির কথাগুলি লিখেছিল| 29 তারপর মোশি সীনয় পর্বত থেকে নেমে এল| সে সেই চুক্তি লেখা পাথরের ফলক দুটি বয়ে নিয়ে এল| প্রভুর সঙ্গে কথা বলার পর মোশির মুখ জ্বলজ্বল করছিল| কিন্তু মোশি নিজে তা জানত না| 30 হারোণ ও ইস্রায়েলের অন্য সব লোকরা তার উজ্জ্বল মুখ দেখে তার কাছে য়েতে ভয় পাচ্ছিল| 31 তখন মোশি তাদের ডেকে পাঠাল| মোশি হারোণ এবং দলপতির সঙ্গে কথা বলল| 32 তারপর সমস্ত ইস্রায়েলবাসী মোশির কাছে এল| সীনয় পর্বতে প্রভু য়েসব আদেশ দিয়েছেন মোশি সেই আদেশের কথা তাদের শোনাল| 33 মোশি তার কথা শেষ করে নিজের মুখ আবরণ দিয়ে ঢেকে ফেলল| 34 কিন্তু মোশি যখনই প্রভুর সঙ্গে কথা বলতে য়েত তখন সে যতক্ষণ না বাইরে আসত ততক্ষণ সেই আবরণ খুলে রাখত| মোশি যখন প্রভুর সান্নিধ্য থেকে বেরিয়ে আসত এবং ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর আদেশসমূহ বলত, 35 তখন তারা মোশির মুখমণ্ডলের ওপর একটি দীপ্তি দেখতে পেত| তাই সে আবার তার মুখ ঢেকে ফেলত, পরের বার প্রভুর সঙ্গে কথা বলতে না যাওয়া পর্য়ন্ত সে ঐভাবেই মুখ ঢেকে রাখত|
1 মোশি সমস্ত ইস্রায়েলবাসীকে একত্র করল| সে তাদের বলল, “প্রভু তোমাদের যা আদেশ করেছেন তা আমি তোমাদের বলব: 2 “তোমরা ছয়দিন ধরে কাজ করবে কিন্তু সপ্তম দিনটি বিশেষভাবে বিশ্রামের জন্য থাকবে| তোমরা ঐদিন বিশ্রাম নেবে এবং এইভাবে প্রভুকে সম্মান জানাবে| য়ে ব্যক্তি সপ্তম দিন কাজ করবে তাকে হত্যা করা হবে| 3 “ঐ বিশ্রামের দিন তোমাদের বাড়ীর কোথাও তোমরা আগুন পর্য়ন্ত জ্বালাবে না|” 4 মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত মণ্ডলীকে বলল, “এইগুলি হল প্রভুর আদেশসমূহ: 5 প্রভুর জন্য বিশেষ উপহার সংগ্রহ কর| প্রত্যেকে মনে মনে ঠিক করে নেবে তোমরা কি দেবে| তারপর তোমরা প্রভুর কাছে উপহারসমূহ আনবে| সোনা, রূপো, পিতল; 6 নীল, বেগুনী ও লাল সুতো ও সূক্ষ্ম মসীনা বস্ত্র; ছাগলের লোম; 7 লাল রঙ করা মেষ চর্ম ও মসৃণ চর্ম; বাবলা কাঠ; 8 প্রদীপের জন্য তেল, অভিষেকের তেলের জন্য মশলাপাতি এবং সুগন্ধি ধূপকাঠির জন্য মশলা এনে তোমরা প্রভুকে দেবে| 9 এফোদ ও বক্ষাবরণের জন্য গোমেদ ও অন্যান্য মূল্যবান মণিমাণিক্যও সঙ্গে এনো| 10 তোমাদের মধ্যে যারা দক্ষ কারিগর তারা এসে প্রভুর আদেশমতো জিনিস তৈরী করো: 11 পবিত্র তাঁবু, তার বাইরের তাঁবু, তার আস্তরণ, আংটাগুলি, তক্তাসমুহ, আগল, খুঁটি ও ভিত্তিসমূহ; 12 পবিত্র সিন্দুক, তার খুঁটিগুলি, আস্তরণ এবং পর্দা যা পবিত্র সিন্দুক যেখানে রাখা আছে সেই জায়গা ঢেকে দেয়; 13 সেই টেবিল ও তার পায়াগুলি, টেবিলের ওপরের সমস্ত জিনিস এবং টেবিলের ওপরের বিশেষ রুটি| 14 বাতির জন্য বাতিদানসমূহ, তার আনুষঙ্গিক অঙ্গ এবং বাতির জন্য তেল| 15 ধূপ বেদী এবং তার খুঁটিসমূহ; অভিষেকের তেল এবং সুগন্ধি ধূপ; য়ে পর্দা পবিত্র তাঁবুর প্রবেশদ্বার ঢেকে রাখবে| 16 হোমবলির জন্য বেদী এবং তার পিতলের জাল, খুঁটিগুলি এবং তার বাসনকোসন, পিতলের পাত্র ও তার দান; 17 প্রাঙ্গণের চারদিকের পর্দা, তাদের খুঁটি ও ভিত্তিসমূহ এবং প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারের পর্দা 18 সমাগম তাঁবুর জন্য এবং প্রাঙ্গণের জন্য কীলকগুলি এবং তাদের দড়িগুলি; 19 পবিত্র স্থানে পরার জন্য যাজকের বিশেষ বস্ত্র -এসবই তোমরা আনবে| এই বিশেষ বস্ত্র যাজক হারোণ ও তার পুত্ররা পরবে| তারা যখন যাজক হবে তখন তারা এই বস্ত্র পরবে|” 20 তারপর ইস্রায়েলের সমগ্র মণ্ডলী মোশির কাছ থেকে চলে গেল| 21 প্লত্যেকে, যাদের হৃদয়ে প্রবৃত্তি ও মনে ইচ্ছা হল তারা প্রভুর জন্য উপহার নিয়ে এল| এই উপহার সামগ্রীগুলি সমাগম তাঁবুর জন্য, তাঁবুর ভেতরের প্রযোজনীয জিনিস এবং বিশেষ বস্ত্র তৈরীর কাজে লাগানো হল| 22 পুরুষ, স্ত্রী যারা ইচ্ছুক ছিল প্রভুর জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে এলো| তারা পিন, দুল, আংটি ও অন্যান্য গযনা নিয়ে এল এবং সমস্ত প্রভুকে দিয়ে দিল| এটা ছিল প্রভুর জন্য বিশেষ নৈবেদ্য. 23 য়ে সমস্ত লোকের কাছে মিহি শনের কাপড় ছিল এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতো ছিল তারা তা নিয়ে প্রভুর কাছে এলো, যাদের কাছে ছাগলের লোম বা লাল রঙ করা মেষের চামড়া বা মসৃণ চামড়া ছিল তারা নিয়ে এল এবং প্রভুকে দিল| 24 যারা প্রভুকে রূপো বা পিতল দিতে চাইল তারা সেটা নিয়ে এল| যাদের কাছে বাবলা কাঠ ছিল যা সমাগম তাঁবু নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা য়েতে পারে তারা সেটা আনল এবং তা প্রভুকে দিল| 25 প্রতিটি দক্ষ মহিলা তাদের হাত দিয়ে সুতো কিটে মিহি শনের কাপড় বুনল এবং লাল, নীল ও বেগুনী সুতো কাটল| 26 ঐ দক্ষ মহিলারা যারা সাহায্য করতে চাইল, তারা ছাগলের লোম থেকে কাপড় তৈরী করল| 27 ইস্রায়েলবাসীদের দলপতিরা গোমেদ ও অন্যান্য মণিমাণিক্য নিয়ে এলো য়েগুলি এফোদ ও যাজকের বক্ষাবরণের উপর লাগানো হবে| 28 তারা মশলা ও জলপাই তেলও নিয়ে এল, এগুলি সুগন্ধি ধূপ, অভিষেকের তেল ও প্রদীপের তেল হিসেবে ব্যবহৃত করবার জন্য| 29 সমস্ত পুরুষ ও নারী, যারা সাহায্য করতে চাইছিল তারা প্রভুর জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে এল| তারা নিজেদের ইচ্ছায স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এই উপহারসামগ্রী প্রদান করল| প্রভু মোশি ও তার লোকদের য়েসব জিনিস বানাতে আদেশ করেছিলেন সেইসব জিনিসই এই উপহার সামগ্রীর সাহায্যে তৈরী করা হল| 30 তারপর মোশি ইস্রায়েলবাসীদের বলল, “দেখ, প্রভু যিহূদা বংশের হূরের পৌত্র, উরির পুত্র বত্সলেলকে মনোনীত করেছেন| 31 তিনি তাকে ঐশ্বরিক ক্ষমতা দিয়েছেন| তিনি তাকে জ্ঞানে ও সর্বপ্রকার বিদ্য়ায পারদর্শী করে তুলেছেন| 32 সে সোনা, রূপো ও পিতলের জিনিস তৈরী করে তার ওপর কারুকার্য়্য় করতে পারে| 33 সে মূল্যবান পাথর ও মণিমাণিক্য কেটে বসাতে পারে| সে কাঠ দিয়েও সর্বপ্রকার জিনিস তৈরী করতে পারে| 34 প্রভু বত্সলেল ও অহলীযাবকে শিক্ষাদান করার বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন| অহলীযাব হল দান বংশীয অহীষামকের পুত্র| 35 প্রভু এই দুজনকেই সর্বপ্রকার কাজ করার জন্য বিশেষ দক্ষতা দিয়েছেন| তারা ছুতোর এবং ধাতুর কাজে দক্ষ| তারা মিহি শনের কাপড়, নীল, বেগুনী এবং লাল সুতোর সাহায্যে কাপড়ে কারুকার্য়্য় করে ও কাপড় বোনে| তারা পশম দিয়েও কাপড় বুনতে পারে|
1 “অতএব বত্সলেল, অহলীযাব ও অন্যান্য সব দক্ষ কারিগরদের অবশ্যই প্রভুর আদেশ অনুসারে কাজটি করতে হবে| প্রভু এদের জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়েছেন যাতে এরা পারদর্শিতার সঙ্গে পবিত্র স্থান তৈরীর কাজ করতে পারে|” 2 তারপর মোশি বত্সলেল, অহলীযাব এবং য়েসব লোকদের প্রভু বিশেষ দক্ষতা দিয়েছিলেন তাদের ডেকে ইস্রায়েলবাসীদের আনা উপহার সামগ্রীগুলি তাদের হাতে তুলে দিল| এই সব লোকরা পবিত্র স্থান তৈরীর কাজে সাহায্য করার জন্যই এসেছিল এবং তারা এই উপহারগুলি ঈশ্বরের পবিত্র স্থান তৈরীর কাজে লাগাল| লোকরা প্রত্যেক দিন সকালেই উপহার নিয়ে আসত| 3 4 শেষকালে ঐসব কারিগররা পবিত্র স্থানের কাজ ছেড়ে মোশির কাছে এল| তারা বলল, 5 “আমাদের তাঁবুর কাজ শেষ করার জন্য যা প্রযোজন তার চেযে লোকরা অনেক বেশী জিনিস এনেছে|” 6 তখন মোশি শিবিরের চারদিকে খবর পাঠাল: “কোনও নারী বা পুরুষ পবিত্র স্থানের জন্য আর কোনও উপহার তৈরী করবে না|” তাই লোকদের উপহার না দিতে বাধ্য করা হল| 7 তারা প্রয়োজনের চেযে অনেক বেশী জিনিস এনেছিল| 8 তারপর দক্ষ কারিগররা পবিত্র তাঁবু তৈরী করবার কাজ আরম্ভ করল| তারা মিহি শনের কাপড়, বেগুনী, নীল ও লাল সুতো দিয়ে দশটি পর্দা তৈরী করল| তারা তার ওপর সূতো দিয়ে ঈশ্বরের বিশেষ ডানাযুক্ত করূব দূতের ছবি বসাল| 9 প্রত্যেকটি পর্দাই ছিল সমান মাপের - 28 হাত লম্বা ও 4 হাত চওড়া| 10 তারপর কারিগররা সেই পর্দাগুলি জুড়ে দুভাগে ভাগ করল| পাঁচটি করে পর্দা নিয়ে একেকটি ভাগ হলো| 11 তারা নীল কাপড় দিয়ে প্রত্যেক ভাগের পর্দার কিনারায একটি ফাঁস তৈরী করল| 12 প্রতিটি ভাগের পর্দার ধারে 50টি করে ফাঁস দিল| ফাঁসগুলি ছিল একে অপরের বিপরীতে| 13 তারা দুটি পর্দাকে জোড়া দেবার জন্য 50টি সোনার আংটা তৈরী করল| এইভাবে পবিত্র তাঁবুটিকে একসঙ্গে একটি খণ্ডে যুক্ত করা হল| 14 তারপর কারিগররা সেই পবিত্র তাঁবুর আচ্ছাদনের জন্য আরেকটি তাঁবু তৈরী করল| তারা ছাগলের লোম দিয়ে এগারোটি পর্দা বানাল| 15 সবগুলি পর্দাই ছিল সমান মাপের - 30হাত লম্বাও 4 হাত চওড়া| 16 তারপর পাঁচটি পর্দা জুড়ে একটি ও ছয়টি পর্দা জুড়ে আরেকটি ভাগ করা হল| 17 দুই ভাগের পর্দার মাঝেই 50টি করে ফাঁস লাগানো হল| 18 দুই ভাগের পর্দাগুলি জুড়ে একটি তাঁবু বানানোর জন্য তারা 50টি পিতলের আংটা তৈরী করল| 19 তারপর তারা পবিত্র তাঁবুর জন্য আরো দুটি আচ্ছাদন তৈরী করল| একটি বানানো হলো লাল রঙ করা ভেড়ার চামড়া দিয়ে আর অন্যটি বানানো হল মসৃণ চামড়া দিয়ে| 20 তারপর কারিগররা পবিত্র তাঁবুকে দাঁড় করানোর জন্য বাবলা কাঠের কাঠামো বানালো| 21 প্রতিটি কাঠামো ছিল 10 হাত লম্বা ও 1.5 হাত চওড়া| 22 প্রতিটি কাঠামো পাশাপাশি দুটি তক্তা জোড়া দিয়ে তৈরী হয়েছিল| প্রতিটি কাঠামো ছিল একইরকম| 23 এইভাবে তারা পবিত্র তাঁবুর কাঠামোগুলো তৈরী করল| তারা পবিত্র তাঁবুর দক্ষিণ দিকের জন্য 20টি কাঠামো তৈরী করল| 24 তারপর ঐ কাঠামোর জন্য 40টি রূপোর পায়া তৈরী করল| প্রত্যেকটি কাঠামোতে দুটি করে পায়া ছিল| প্রতিটি তক্তার ধারে একটি করে পায়া| 25 তাঁবুর উত্তর দিকের জন্যও তারা 20টি কাঠামো তৈরী করল| 26 তারা 40টি রূপোর ভিত্তি তৈরী করল, প্রত্যেক কাঠামোর জন্য দুটি করে ভিত্তি| 27 তাঁবুর পিছনে পশ্চিম দিকের জন্য তারা আরো দুটি কাঠামো তৈরী করল| 28 পবিত্র তাঁবুর পিছনে কোনার দিকের জন্যও তারা দুটি কাঠামো তৈরী করল| 29 এই কাঠামোগুলিকে একত্র করে নীচের দিকে জোড়া দেওয়া হল এবং ওপর দিকে একটা আংটা দিয়ে দুদিকের কোনার কাঠামোগুলি জোড়া হল| 30 পবিত্র তাঁবুর পশ্চিম দিকের জন্য মোট আটটি কাঠামো ছিল| সেখানে 16টি রূপোর পায়াও ছিল যা প্রতিটি কাঠামোতে দুটি করে লাগানো হল| 31 তারপর কারিগররা বাবলা কাঠ দিয়ে কাঠামোর আগল তৈরী করল| তাঁবুর প্রথম পাশে পাঁচটি আগল, 32 অন্য দিকে পাঁচটি আগল লাগালো এবং পেছনদিকে অর্থাত্ পশ্চিম দিকে পাঁচটি আগল লাগালো| 33 মাঝের আগলটিকে রাখা হল কাঠামোর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত জুড়ে| 34 কাঠামোগুলিকে সোনায মুড়ে দেওয়া হল| তারপর তারা সোনার আংটা তৈরী করল আগলগুলি ধরে রাখার জন্য এবং আগলগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল| 35 তারা মিহি শনের কাপড় দিয়ে পর্দাসমূহ তৈরী করল এবং তারা বিশেষ পর্দাটি তৈরী করবার জন্য নীল, বেগুনী ও লাল সূতো তৈরী করল| তারা সেগুলোর ওপর করূব দূতদের চেহারা সেলাই করল| 36 চারটি বাবলা কাঠের খুঁটি বানিয়ে সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল| তারা খুঁটির জন্য সোনার আংটা তৈরী করল এবং চারটি করে রূপোর পায়া তৈরী করল| 37 তারপর তারা তাঁবুতে ঢোকার জন্য দরজার পর্দা বানাল মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতা ব্যবহার করে| এর ওপর তারা সুতার কাজও করল| 38 তারপর তারা এই ঢোকার দরজার পর্দার জন্য পাঁচটি খুঁটি ও আংটা তৈরী করল| তারপর এই খুঁটির ও পর্দার আংটার মাথাগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল| তারপর খুঁটির জন্য পাঁচটি করে পিতলের পায়া প্রস্তুত করা হল|
1 বত্সলেল বাবলা কাঠ দিয়ে পবিত্র সিন্দুক তৈরী করল| সিন্দুকটি 2.5 হাত লম্বা, 1.5 হাত চওড়া আর 1.5 হাত উঁচু| 2 তারপর সে খাঁটি সোনা দিয়ে সিন্দুকের ভেতর ও বাইরের দিকে মুড়ে দিল| সে সিন্দুকের চারিদিকে সোনার জরি দিয়ে ঘিরেও দিল| 3 এরপর সে চারটি সোনার আংটা চারকোণায় রাখল সিন্দুকটি বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য| এর একদিকে দুটি আংটা লাগানো ছিল এবং দুটি আংটা লাগানো ছিল এর অন্য দিকে| 4 সিন্দুকটি বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবলা কাঠের খুঁটি তৈরী করে সে সেগুলি খাঁটি সোনায মুড়ে দিল| 5 তারপর সে পবিত্র সিন্দুকের প্রতিটি ধারে আংটাগুলির ভেতর দিয়ে খুঁটিগুলি ঢুকিয়ে দিল| 6 তারপর সে খাঁটি সোনা দিয়ে আচ্ছাদনটি তৈরী করল| এটা ছিল 2.5 হাত লম্বা ও 1.5 হাত চওড়া| 7 তারপর সে পেটানো সোনা দিয়ে দুটি করূব দূত তৈরী করল এবং সেগুলো আচ্ছাদনের দুধারে রেখে দিল| 8 তারপর সে করূব দূতের মূর্ত্তি দুটি পাপমোচন স্থানের আচ্ছাদনের সঙ্গে জুড়ে একত্র করল| 9 দূতরা ডানা আকাশে ছড়িয়ে পবিত্র সিন্দুকটিকে ঢেকে দিল| দূতরা পরস্পর মুখোমুখি হয়ে পাপমোচন স্থানের দিকে তাকিযে রইল| 10 বত্সলেল বাবলা কাঠ দিয়ে একটি 2 হাত লম্বা, 1 হাত চওড়া ও 1.5 হাত উঁচু টেবিল বানাল| 11 টেবিলের চারধার খাঁটি সোনার পাত দিয়ে সে মুড়ে দিল| এবং তার চারধারে একটি সোনার ঝালর লাগিয়ে দিল| 12 তারপর সে একটি 1 হাত চওড়া কাঠামো তৈরী করল টেবিলের সব ধার ঘিরে এবং কাঠামোর চারপাশে সোনার ঝালর লাগালো| 13 তারপর সে টেবিলের চারকোণায চারপায়ায চারটি সোনার আংটা লাগাল| 14 সে টেবিলটাকে বইবার জন্য আংটাগুলো কাঠামোর খুব কাছে আটকে দিল| 15 তারপর সে টেবিলটি বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবলা কাঠের খুঁটি তৈরী করল| খাঁটি সোনা দিয়ে খুঁটিগুলিও মুড়ে দিল| 16 এরপর সে টেবিলে ব্যবহারের জন্য সোনার প্লেট, চামচ, বাটি ও কলসী বানাল| পেয নৈবেদ্য ঢালার জন্য বাটি ও কলসী ব্যবহার করা হল| 17 তারপর সে সোনার বাতিদানটি তৈরী করল| সে খাঁটি সোনা হাতুড়ি দিয়ে পেটালো এবং তৈরী করল বাতিদানের বিস্তৃত পাদানী| সে ফুল, পাতা, কুঁড়ি দিয়ে কারুকার্য়্য় করে সবকিছু একত্রে জুড়ে দিল| 18 বাতিদানের ছয়টি শাখা, একদিকে তিনটি অপরদিকে আরও তিনটি| 19 প্রতিটি ডালে থাকল তিনটি করে ফুল| সেগুলি কাঠ বাদামের ফুলের মতো তাতে কুঁড়ি ও পাতা রাখা হল| 20 বাতিদানের দণ্ডে আরও চারটি ফুল রাখা হল কুঁড়ি ও পাপড়ি সমেত যা দেখতে বাদাম ফুলের মতো| 21 তাতে একেক দিকে তিনটি করে মোট ছয়টি ডালও রাখা হল| প্রতি জোড়া ডালগুলির নীচে য়েগুলি বিস্তৃত পাদানীর সঙ্গে যুক্ত ছিল, সেখানে কুঁড়ি ও পাপড়িসহ একটি ফুল ছিল| 22 পুরো বাতিদানটি খাঁটি সোনায ফুলপাতাসহ একসাথে জোড়া দিয়ে তৈরী করা হল| 23 এই বাতিদানের জন্য সাতটি প্রদীপ তৈরী করা হল| তারপর সে খাঁটি সোনা দিয়ে সলতের চিমটা ও শীষদানী পাত্র তৈরী করল| 24 সে মোট 75 পাউণ্ড খাঁটি সোনা ব্যবহার করে এই বাতিদান ও তার আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র তৈরী করল| 25 এরপর ধূপ-ধূনা পোড়াবার জন্য সে বাবলা কাঠ দিয়ে একটি ধূপদানী তৈরী করল| এটা ছিল 1 হাত লম্বা, 1 হাত চওড়া এবং 2 হাত উচ্চতা বিশিষ্ট একটি চৌকোনা জিনিস| ধূপদানের চারকোণের প্রতিটিতে একটি করে শৃঙ্গ ছিল| এই শৃঙ্গগুলি ও ধূপবেদী একটি অখণ্ড টুকরো ছিল| 26 সে ধূপদানের ওপর চারপাশ এবং শৃঙ্গগুলি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিল| তারপর ধূপদানের চারপাশ সোনার জরি দিয়ে মুড়ে দিল| 27 এই জরির নীচে দুধারে আংটা লাগানো হল| এই আংটা লাগানো হল বয়ে নিয়ে যাওয়ার খুঁটি ধরে রাখার জন্য| 28 সে এই খুঁটিগুলি বাবলা কাঠ দিয়ে তৈরী করে সোনা দিয়ে মুড়ে দিল| 29 তারপর সে একজন সুগন্ধি প্রস্তুতকারক য়েমন করে সুগন্ধ তৈরী করে সেইভাবে পবিত্র অভিষেকের তেল এবং খাঁটি ও সুগন্ধি ধূপ-ধূনা তৈরী করল|
1 তারপর বত্সলেল বাবলা কাঠ দিয়ে হোমবলির বেদী তৈরী করলেন| এটা ছিল 5 হাত লম্বা, 5 হাত চওড়া ও 3 হাত উচ্চতা বিশিষ্ট চৌকোনা আকারের| 2 তারপর সে বেদীর প্রত্যেকটি কোণের জন্য একটি করে শৃঙ্গ বানালো এবং তাদের কোণায জুড়ে দিল যাতে তা অখণ্ড হয় এবং বেদীটি পিতল দিয়ে ঢেকে দিল| 3 সে বেদীতে ব্যবহারের সব সরঞ্জাম পিতল দিয়ে তৈরী করল| সে পাত্র, বেলচা, বাটি, কাঁটা চামচ, চাটু ইত্যাদি তৈরী করল| 4 তারপর সে পিতল দিয়ে জালের মতো একটি ঝাঁঝরি তৈরী করল| বেদীর বেড়ের নীচে থেকে মাঝখান পর্য়ন্ত এই ঝাঁঝরি বসানো হল| 5 তারপর সে বেদীটি বয়ে নিয়ে যাওয়ার খুঁটি লাগাবার জন্য ঝাঁঝরির চারকোণা়য চারটি আংটা লাগাল| 6 তারপর সে বাবলা কাঠ দিয়ে খুঁটি তৈরী করে পিতল দিয়ে মুড়ে দিল| 7 বেদীটি বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য খুঁটিগুলো আংটার ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হল| বেদীর ধারগুলো তৈরী করা হল তক্তা দিয়ে| এটা ছিল একটা খালি সিন্দুকের মতো ফাঁপা| 8 তারপর সে পিতল দিয়ে পাত্র এবং পাত্রের পায়া তৈরী করল| এটা মহিলাদের দেওয়া পিতলের আযনা থেকে নেওয়া হয়েছিল| এই মহিলারা সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজায় সেবা করার জন্য এসেছিল| 9 তারপর সে প্রাঙ্গণের চারিদিকে পর্দার একটি দেওয়াল তৈরী করল| দক্ষিণ দিকে সে 100 হাত লম্বা পর্দার একটি দেওয়াল তৈরী করল| এই পর্দাগুলো ছিল মিহি শনের কাপড় দিয়ে তৈরী| 10 কুড়িটি খুঁটির সাহায্যে এই পর্দাগুলিতে অবলম্বন দেওয়া ছিল| খুঁটিগুলো ছিল 20টি পিতলের ভিত্তির উপর| খুঁটির আংটা ও পর্দার বন্ধনী ছিল রূপোর তৈরী| 11 উত্তর দিকের প্রাঙ্গণেও ছিল 100 হাত লম্বা পর্দার একটি দেওয়াল| সেখানে 20টি পিতলের ভিত্তির ওপর 20টি খুঁটি ছিল| খুঁটির আংটা ও পর্দার বন্ধনী ছিল রূপোর| 12 পশ্চিমদিকের প্রাঙ্গণে থাকল 50 হাত লম্বা পর্দার দেওয়াল| আর থাকল 10টি খুঁটি ও 10টি ভিত্তি| খুঁটির আংটা ও পর্দার বন্ধনী তৈরী করা হল রূপো দিয়ে| 13 প্রাঙ্গণের পূর্ব দিকে 50 হাত চওড়া| প্রাঙ্গণে প্রবেশের দরজা রাখা হল এই দিকেই| 14 প্রবেশ দরজার দিকের পর্দা ছিল 15 হাত লম্বা| এইদিকে তিনটি খুঁটি ও তিনটি ভিত্তি ছিল| 15 অন্যদিকের প্রবেশ দরজাও ছিল 15 হাত লম্বা| ঐদিকে তিনটি খুঁটি ও তিনটি পায়া ছিল| 16 প্রাঙ্গণের চারিদিকের সব পর্দাই ছিল মিহি শনের কাপড়ের তৈরী| 17 খুঁটির ভিত্তিগুলো ছিল পিতলের তৈরী| দণ্ডগুলির আংটা ও পর্দার বন্ধনী ছিল রূপো দিয়ে তৈরী| খুঁটির মাথাগুলো ছিল রূপো দিয়ে মোড়া| প্রাঙ্গণের সব খুঁটিতেই ছিল রূপোর পর্দাবন্ধনী| 18 প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজার পর্দা তৈরী করা হল মিহি শনের কাপড় দিয়ে| এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে| পর্দার ওপর সুতোর কারুকার্য়্য়ও করা হল| পর্দাটি ছিল 20 হাত লম্বা এবং 5 হাত উঁচু| এগুলো প্রাঙ্গণের চারিদিকের পর্দার সমান উঁচু| 19 পর্দা ঠেকা দেওয়া হল চারটি খুঁটি ও চারটি পিতলের পায়া দিয়ে| খুঁটির আংটা তৈরী করা হল রূপো দিয়ে| খুঁটির ওপরের দিক আর পর্দার বন্ধনী রূপোর| 20 পবিত্র তাঁবুর সমস্ত কীলকগুলো এবং প্রাঙ্গণের চারিদিকের পর্দাগুলো ছিল পিতলের তৈরী| 21 মোশি লেবীয়দের আদেশ দিল পবিত্র তাঁবু বা সাক্ষ্যের তাঁবু তৈরীর কাজে যা কিছু ব্যবহার করা হয়েছে তা একটি তালিকায লিখে রাখতে| এই তালিকার দায়িত্ব দেওয়া হল যাজক হারোণের পুত্র ঈথামরকে| 22 যিহূদা বংশীয হূরের পৌত্র ও উরির পুত্র বত্সলেল মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুসারে সব কিছু তৈরী করল| 23 দান বংশীয অহীষামকের পুত্র অহলীযাব তাকে এই কাজে সাহায্য করল| সে একজন দক্ষ কারিগর ও কারুশিল্পী| সে মিহি শনের কাপড়, নীল, বেগুনী ও লাল সুতো বোনায পারদর্শী ছিল| 24 এই পবিত্র স্থান নির্মাণের জন্য 2 টনেরও বেশী সোনা দেওয়া হয়েছিল| এটা ছিল সরকারি হিসাব অনুযায়ীওজন| 25 যতজন লোককে গোনা হয়েছিল তারা সবাই আমলাতান্ত্রিক পরিমাণ অনুসারে 3.75 টন রূপো দিয়েছিল| 26 কুড়ি বছর বা তার বেশী বযসের লোকদের গোনা হয়েছিল| মোট 6,03,550 জন পুরুষ ছিল এবং প্রত্যেককে আমলাতান্ত্রিক পরিমাপ অনুসারে 1.5 আউন্স রূপো কর হিসেবে দিতে হয়েছিল| 27 তারা 3.75 টন রূপো ব্যবহার করে প্রভুর পবিত্র স্থান এবং পর্দার জন্য 100টি ভিত্তি তৈরী করেছিল| তারা পবিত্র স্থানের ভিত্তির জন্য এবং পর্দার পায়ার জন্য 3.75 টন রূপো ব্যবহার করেছিল| মোট 100টি ভিত্তি করা হয়েছিল| তারা প্রতিটি ভিত্তির জন্য 75 পাউণ্ড রূপো ব্যবহার করেছিল| 28 বাকি 50 পাউণ্ড রূপো দিয়ে আংটা পর্দার বন্ধনী তৈরী করেছিল এবং খুঁটির মাথা মুড়ে দিয়েছিল| 29 প্রভুকে 26.5 টনেরও বেশী পিতল নৈবেদ্য দেওয়া হয়েছিল| 30 ঐ পিতল দিয়ে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজার পায়া তৈরী করা হয়েছিল| পিতল দিয়ে, বেদী ও ঝাঁঝরি তৈরী হয়েছিল| বেদীতে প্রযোজনীয সমস্ত জিনিসপত্র পিতল দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল| 31 প্রাঙ্গণের চারিদিকের পর্দা ও প্রবেশ দরজার পর্দার পায়াও পিতল দিয়ে বানানো হয়েছিল| পবিত্র তাঁবুর খুঁটি এবং প্রাঙ্গণের চারদিকের পর্দার জন্য পিতল ব্যবহার করা হয়েছিল|
1 যাজকরা যখন প্রভুর পবিত্র স্থানে সেবা করবে তখন তারা য়ে বিশেষ পোশাক পরবে, সেটা নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে কারিগররা তৈরী করল| তারা মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুযায়ীহারোণের জন্য বিশেষ পোশাক তৈরী করল| 2 তারা মিহি শনের কাপড়, সোনার জরি, নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে এফোদ তৈরী করল| 3 তারা সোনা পিটিযে সরু পাত তৈরী করে তারপর তা থেকে সোনার জরি বানাল| তারপর তারা সেই সোনার জরি নীল, বেগুনী, লাল সুতো ও শনের কাপড়ের সাথে একসাথে বুনল| এটা খুবই দক্ষ কারিগরের কাজ| 4 তারা এফোদের জন্য কাঁধের কাপড় বানাল য়েটা এফোদের দুই কোনে বেঁধে দেওয়া হল| 5 তারা কোমরবন্ধনী বুনে এফোদের সাথে জুড়ে দিল| মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুযায়ীএটাও এফোদের মতই মিহি শনের কাপড় নীল, বেগুনী ও লাল সুতো এবং সোনার জরি দিয়ে বোনা হল| 6 কারিগররা এফোদের জন্য সোনার ওপর গোমেদ বসালো| তারা ঐ পাথরগুলোর ওপর ইস্রায়েলের পুত্রদের নাম খোদাই করল| 7 তারপর তারা এই মণিগুলো এফোদের ওপর বসিযে দিল| এই অলংকারগুলি ইস্রায়েলের লোকদের জন্য একটি স্মারক হয়ে থাকবে| এসবই করা হয়েছিল মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুসারে| 8 তারপর তারা বক্ষাবরণ তৈরী করল| ঠিক এফোদের মতোই এটাও ছিল একজন দক্ষ কারিগরের কাজ| এটা তৈরী করা হল সোনার জরি, মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল কাপড় দিয়ে| 9 বক্ষাবরণটিকে অর্ধেক করে ভাঁজ করে চারকোণা একটি পকেটের আকার দেওয়া হল| এটা ছিল 9 ইঞ্চি লম্বা আর 9 ইঞ্চি চওড়া| 10 তারপর কারিগররা বক্ষাবরণটির ওপর চার সারি মণিমাণিক্য বসালো| প্রথম সারিতে ছিল চূনী, পীতমণি ও মরকত| 11 দ্বিতীয সারিতে ছিল পদ্মরাগ, নীলকান্ত ও পান্না, 12 তৃতীয় সারিতে ছিল পোখরাজ, য়িস্ম ও কটাহেলা| 13 চতুর্থ সারিতে ছিল বৈদুর্য়্য়, গোমেদ ও সূর্য়কান্তমণি| এইসব মণি সোনার ওপর বসানো হল| 14 বক্ষাবরণটির ওপর মোট বারোটি মণি ছিল| ইস্রায়েলের প্রত্যেক পুত্রের জন্য ছিল একটি করে মণি| প্রত্যেক অলঙ্কারের ওপর শীলমোহরের মতো ইস্রায়েলের বারোটি পরিবারগোষ্টীর একটি করে নাম খোদাই করা ছিল| 15 কারিগররা বক্ষাবরণের জন্য খাঁটি সোনার শেকলসমূহ বানালো| এই শেকলগুলি দড়ির মত পাকানো ছিল| 16 কারিগররা দুটি সোনার আংটা বানিয়ে বক্ষাবরণের দুই কোণে আটকে দিল| তার কাঁধের জন্য দুটি সোনার স্থালীও তৈরী করল| 17 তারা সোনার চেন দুটিকে বক্ষাবরণের কোণের আংটার সাথে বেঁধে দিল| 18 তারা আরো দুটি সোনার আংটা বানিয়ে বক্ষাবরণের অপর দুটি কোণে আটকে দিল| এটা ছিল বক্ষাবরণের ভিতরের দিকে এফোদের ঠিক পরেই| তারা সোনার শেকলের অপর প্রান্তগুলি সামনের দিক দিয়ে এফোদের কাঁধের পট্টির সোনার অলঙ্কারের সঙ্গে যুক্ত করেছিল| 19 তারপর তারা আরো দুটি সোনার আংটা তৈরী করল এবং সেগুলি এফোদের পাশে বক্ষাবরণের ভেতরদিকের ধারে আটকে দিল| 20 তারা আরো দুটি সোনার আংটা বসাল কাঁধের পট্টির নীচে এফোদের সামনে| এই আংটাগুলি ছিল বন্ধনীর কাছে, কোমরবন্ধনীর ওপর| 21 তারপর তারা একটি নীল ফিতের সাহায্যে বক্ষাবরণীর আংটার সাথে এফোদের আংটা বেঁধে দিল| এইভাবে প্রভুর আদেশ অনুযায়ীবক্ষাবরণটি এফোদের সাথে শক্তভাবে বাঁধা থাকল| 22 তারপর তারা এফোদের জন্য সম্পূর্ণরূপে নীল কাপড় দিয়ে একটি পোশাক বুনল| 23 তারা আলখাল্লার মাঝখানে একটি ফুটো করল এবং এই ফুটোর চারধার দিয়ে এক টুকরো কাপড় সেলাই করে দিল, ফুটোটি যাতে না ছেঁড়ে তার জন্য| 24 তারপর তারা মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে বেদানা তৈরী করল| এই বেদানাগুলি তারা আলখাল্লার নীচের ধারে ঝুলিয়ে দিল| 25 তারা খাঁটি সোনার ঘন্টা তৈরী করল এবং সেগুলি আলখাল্লার নীচের ধারে বেদানার মাঝে মাঝে লাগিয়ে দিল| 26 আলখাল্লার নীচের ধারে প্রত্যেকটি বেদানার মাঝখানে একটি করে ঘন্টা লাগানো হল| মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশমতই প্রভুর সেবা করার সময় যাজকের পরার জন্য পোষাক তৈরী করা হল| 27 দক্ষ কারিগররা হারোণ ও তার পুত্রদের জন্য মিহি শনের কাপড়ের জামা তৈরী করল| 28 তারা মিহি শনের কাপড় দিয়ে একটি পাগড়ি, মাথায় বাঁধার ফিতে ও ভেতরে পরার পোশাক তৈরী করল| 29 মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশমতো তারা মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে কাপড়ের ওপর সুঁচের কাজ করে বন্ধনী তৈরী করল| 30 তারপর তারা খাঁটি সোনা থেকে সোনার পাত তৈরী করল পবিত্র মুকুটের জন্য| তারা সোনার ওপর এই কথাগুলি খোদাই করল; ‘পবিত্র প্রভুর কাছে|’ 31 তারপর তারা এই সোনার পাতটিকে একটি নীল ফিতের সঙ্গে বেঁধে দিল| তারা মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুসারে নীল ফিতেটিকে পাগড়ির সঙ্গে জড়িয়ে বেঁধে দিল| 32 অবশেষে পবিত্র তাঁবু বা সমাগম তাঁবুর কাজ শেষ হল| মোশিকে প্রভু যা যা আদেশ দিয়েছিলেন ইস্রায়েলবাসী ঠিক সেইভাবেই সবকিছু করল| 33 তারপর তারা মোশিকে ডেকে পবিত্র তাঁবু ও তার ভেতরের সব জিনিস দেখাল| তারা মোশিকে আংটা, কাঠামো, আগল, খুঁটি এবং পায়া দেখাল| 34 তারা তাকে তাঁবুর লাল রঙ করা মেষের চামড়ার তৈরী আবরণ দেখাল| তারা তাকে মসৃণ চামড়ার তৈরী আবরণও দেখাল| তাকে সর্বোচ্চ পবিত্রতম স্থানের প্রবেশ দরজার পর্দাও দেখানো হল| 35 মোশিকে সাক্ষ্য সিন্দুকটিও দেখানো হল| সিন্দুকটি বহন করার জন্য খুঁটি ও সিন্দুকটির আবরণও তারা দেখাল| 36 তারা তাকে টেবিল ও তার উপরে রাখা জিনিস এবং বিশেষ রুটিও দেখাল| 37 তারা তাকে খাঁটি সোনার তৈরী দীপদান ও তার দীপগুলিও দেখাল| তারা দীপের জন্য ব্যবহৃত তেল ও দীপের আনুষঙ্গিক অংশগুলিও দেখাল| 38 মোশিকে সোনার বেদী, অভিষেকের তেল, সুগন্ধী ধূপ-ধূনা এবং তাঁবুর প্রবেশ দরজার পর্দাও দেখানো হল| 39 তারা পিতলের বেদী ও পিতলের খুরা দেখাল| তারা বেদী বহন করার খুঁটি ও বেদীতে ব্যবহার্য় সব জিনিস দেখাল| পাত্র এবং পাত্রের পায়াও দেখাল| 40 তারা মোশিকে প্রাঙ্গণের চারিদিকের পর্দা, তার খুঁটি এবং পায়াও দেখাল| প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজার পর্দা, দড়ি, তাঁবুর খুঁটি এবং পবিত্র তাঁবু বা সমাগম তাঁবুর সমস্ত কিছুই মোশিকে দেখানো হল| 41 তারা পবিত্র স্থানে সেবার জন্য যাজকদের পোশাক, হারোণ এবং তার পুত্রদের জন্য তৈরী বিশেষ পোশাক মোশিকে দেখাল| এই পোশাক হারোণের পুত্ররা যাজকের কাজ করার সময় পরবে| 42 ইস্রায়েলবাসীরা মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ মতোই সমস্ত কাজ করেছিল| 43 মোশি সবকিছু ভাল করে পর্য়বেক্ষণ করে দেখল য়ে সবকিছুই হুবহু প্রভুর আদেশ মতোই হয়েছে| তাই মোশি তাদের আশীর্বাদ করল|
1 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “প্রথম মাসের প্রথম দিনে তোমরা পবিত্র তাঁবু অর্থাত্ সমাগম তাঁবু স্থাপন করবে| 3 সাক্ষ্য সিন্দুকটি পবিত্র তাঁবুতে রাখো এবং আবরণ দিয়ে ঢেকে দাও| 4 টেবিলটি নিয়ে এসো এবং ওপরে য়ে সব জিনিস থাকার কথা সেগুলি রাখো| তারপর দীপদানটি তাঁবুতে নিয়ে এসে দীপগুলি ঠিক জায়গা মতো রাখো| 5 এরপর তাঁবুতে নৈবেদ্য দেওয়ার জন্য সোনার বেদীটি নিয়ে এসো| সাক্ষ্য সিন্দুকটির সামনে বেদীটি রাখো| পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজায় পর্দা টাঙিযে দাও| 6 “হোমবলি দেওয়ার জন্য বেদীটি পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজার সামনে রাখো| 7 হাতমুখ ধোওযার জন্য পাত্রটিতে জল রেখে সেটি সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে রাখো| 8 প্রাঙ্গণের চারিদিকে পর্দার দেওয়াল টাঙিযে দাও| তারপর প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজায় পর্দা লাগিয়ে দাও| 9 “অভিষেক তেল ব্যবহার করে পবিত্র তাঁবু ও তার ভেতরের সবকিছুর অভিষেক করো| তুমি যখন ঐসব জিনিসের ওপর তেল ছেটাবে তখন সবকিছু পবিত্র হয়ে যাবে| 10 হোমবলির জন্য বেদীটি অভিষেক করো এবং অভিষেকের তেল দিয়ে বেদীর সমস্ত জিনিস অভিষিক্ত করো| এতে বেদীটি খুব পবিত্র হয়ে উঠবে| 11 পাত্র ও পাত্র দানকে পবিত্র করবার জন্য তাদের অভিষেক করো| 12 “হারোণ ও তার পুত্রদের সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজায় নিয়ে এসো| তাদের জল দিয়ে স্নান করাও| 13 তারপর হারোণকে বিশেষ পোশাক পরাও| তাকে তেল দিয়ে অভিষেক করে পবিত্র করো| তাহলে সে যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারবে| 14 তার পুত্রদের পোশাক পরাও| 15 তার পুত্রদের ঠিক সেভাবে অভিষেক করাও য়েভাবে তাদের পিতাকে করেছ| তাহলে তারাও যাজক হিসেবে আমার সেবা করতে পারবে| যখন তুমি তাদের অভিষেক করবে তখন তারা যাজক হয়ে যাবে| এবং এই পরিবার আগামী দিনেও চিরকালের মত যাজকের কাজ করবে|” 16 মোশি প্রভুর আদেশ মেনে তাঁর নির্দেশ মতো সবকিছু করল| 17 তাই ঠিক সমযে পবিত্র তাঁবু স্থাপন করা হল| তারা মিশর ছেড়ে যাবার দ্বিতীয বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন তাঁবু স্থাপন করা হয়েছিল| 18 মোশি তাঁবুর ভিত্তিগুলো জায়গামত স্থাপন করল| তারপর সে ভিত্তিগুলোর ওপর কাঠামোটি বসাল এবং আগল দিয়ে খুঁটিগুলো বসাল| 19 তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর ওপর বাইরের তাঁবু বসাল| এবং তার ওপর আচ্ছাদন দিল| সে সব কিছুই প্রভুর আদেশ মতো করল| 20 মোশি চুক্তিপত্র নিয়ে পবিত্র সিন্দুকে রাখল| খুঁটিগুলো সিন্দুকের ওপর রেখে সেটিকে আবরণ দিয়ে ঢেকে দিল| 21 তারপর মোশি পবিত্র সিন্দুকটি পবিত্র তাঁবুতে রাখল| সিন্দুকটির সুরক্ষার জন্য সে ঠিক জায়গায় পর্দা টাঙ্গালো এবং এভাবেই সে প্রভুর আদেশ মতো সাক্ষ্য সিন্দুকটির সুরক্ষার ব্যবস্থা করল| 22 তারপর সে পবিত্র তাঁবুর উত্তরদিকে পবিত্র স্থানের পর্দার সামনে টেবিলটি রাখলো| 23 প্রভুর আদেশ অনুসারে মোশি প্রভুর সামনে টেবিলের ওপর রুটি রাখল| 24 তারপর সে তাঁবুটির দক্ষিণ দিকে টেবিলের বিপরীত দিকে দীপদানটি রাখল| 25 প্রভু য়েমনটি আদেশ করেছিলেন সেই মতো মোশি দীপগুলি স্থাপন করল এবং সেগুলো প্রভুর সামনে রাখল| 26 এরপর মোশি সমাগম তাঁবুর পর্দার সামনে সোনার বেদীটি রাখল| 27 প্রভুর আদেশ মতো মোশি তার ভেতরে সুগন্ধি ধূপ-ধূনো পোড়ালো| 28 তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজায় পর্দা টাঙালো| 29 মোশি হোমবলির বেদীটি সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজার সামনে রাখল| তারপর মোশি সেই বেদীতে একটি হোমবলি দিল| সে প্রভুকে শস্য নৈবেদ্যও দিল| সে সবকিছুই প্রভুর আদেশ মতো করল| 30 মোশি এরপর সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে হাত মুখ ধোওযার জন্য জল ভর্ত্তি পাত্রটি রাখল| 31 হাত ও পা ধোযার জন্য মোশি, হারোণ ও তার পুত্ররা এই পাত্রের জল ব্যবহার করল| 32 তারা প্রত্যেকবার তাঁবুতে ঢোকার সময় এবং বেদীর কাছে যাওয়ার সময় তাদের হাত পা ধুয়ে নিল| এসব কিছুই করা হল প্রভুর আদেশ অনুসারে| 33 তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর প্রাঙ্গণের চারিদিকে পর্দা দিয়ে দিল| সে বেদীটি প্রাঙ্গণে রেখে প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজায় পর্দা লাগাল| এইভাবেই মোশি তার সব কাজ শেষ করল| 34 এরপরই মেঘ এসে পবিত্র সমাগম তাঁবু ঢেকে ফেলল| এবং প্রভুর মহিমায পবিত্র তাঁবু পরিপূর্ণ হল| 35 মোশি সমাগম তাঁবুতে ঢুকতে পারল না| কারণ তা মেঘে ঢেকে ছিল এবং প্রভুর মহিমায ছিল পরিপূর্ণ| 36 এই মেঘই ইস্রায়েলের লোকদের দেখিয়ে দিয়েছিল য়ে কখন যাত্রা শুরু করতে হবে| যখন পবিত্র তাঁবুর ওপর থেকে মেঘ সরে যাবে তখনই ইস্রায়েলের লোকরা যাত্রা শুরু করতে পারবে| 37 কিন্তু যখন মেঘ পবিত্র তাঁবুর ওপর ছিল তখন লোকরা তাদের যাত্রা শুরু করার চেষ্টা করেনি| যতক্ষণ না মেঘ ওপরে উঠেছিল ততক্ষণ তারা সেখানেই ছিল| 38 তাই প্রভুর মেঘ দিনের বেলায় ছিল সমাগম তাঁবুর ওপরে এবং রাতে আগুন ছিল মেঘের ভেতরে| তাই ইস্রায়েলের সমগ্র পরিবার তাদের পুরো যাত্রাপথে মেঘটি দেখতে পাচ্ছিল|
1 প্রভু ঈশ্বর মোশিকে ডাকলেন এবং সমাগম তাঁবু থেকে তার সঙ্গে কথা বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বল: যখন প্রভুর কাছে তোমরা কোন নৈবেদ্য নিয়ে আসবে, সেই নৈবেদ্য যেন তোমাদেরই কোন একটি গৃহপালিত প্রাণী হয়, তা একটি গরু, মেষ বা ছাগলও হতে পারে| 3 “যখন কোন ব্যক্তি তার গো-পাল থেকে হোমবলি দেয়, তখন সেটা যেন ষাঁড় হয়, যার মধ্যে কোন দোষ নেই| সমাগম তাঁবুতে ঢোকার মুখে সে প্রাণীটিকে আনবে| তারপর প্রভু সেই নৈবেদ্য গ্রহণ করবেন| 4 প্রাণীটিকে হত্যা করার সময় সে অবশ্যই প্রাণীটির মাথায় তার হাত রাখবে| প্রভু সেই ব্যক্তিকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্যই প্রায়শ্চিত্তরূপে হোমবলি গ্রহণ করবেন| 5 “প্রভুর সামনেই সে সেই এঁড়ে বাছুরটিকে হনন করবে| তারপর হারোণের পুত্ররা অর্থাত্ যাজকরা সমাগম তাঁবুতে ঢোকার মুখে অবস্থিত বেদীর কাছে অবশ্যই সেই রক্ত আনবে এবং বেদীর ওপরে এবং চারপাশে তা ছিটিয়ে দেবে| 6 যাজকরা অবশ্যই প্রাণীটির দেহ থেকে চামড়া ছাড়াবে এবং তারপর প্রাণীটিকে কেটে টুকরো টুকরো করবে| 7 হারোণের পুত্ররা অর্থাত্ যাজকরা অবশ্যই বেদীতে আগুন জ্বালবে এবং তারপর আগুনের ওপর কাঠ চাপাবে| 8 তারপর তারা বেদীর ওপরের আগুনে জড়ো করা কাঠের ওপর অবশ্যই টুকরোগুলো (মাথা আর চর্বিযুক্ত মাংস) রাখবে| 9 যাজকরা জল দিয়ে অবশ্যই জন্তুটির পাগুলি আর দেহের ভিতরের অংশগুলি ধুয়ে নেবে| তারপর তারা বেদীর ওপরকার জন্তুটির সমস্ত অংশ পুড়িয়ে নেবে| এ হল হোমবলি, আগুনে প্রস্তুত একটি নৈবেদ্য| এই নৈবেদ্যর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 10 “যখন কেউ হোমবলি হিসেবে একটা মেষ বা একটা ছাগল উপহার দেয়, তখন সেই প্রাণীটিকে অবশ্যই পুরুষ প্রাণী হতে হবে, যার মধ্যে কোন দোষ বা খুঁত নেই| 11 প্রভুর সামনে বেদীর উত্তর দিকে সে প্রাণীটিকে হত্যা করবে| তারপর হারোণের পুত্ররা অর্থাত্ যাজকরা প্রাণীটির রক্ত বেদীর ওপরে এবং চারপাশে ছিটিয়ে দেবে| 12 তারপর যাজকরা প্রাণীটিকে টুকরো টুকরো করে কাটবে| তারপর তারা টুকরোগুলো (মাথা ও চর্বিযুক্ত মাংস) বেদীর আগুনে রাখা কাঠের ওপর রাখবে| 13 যাজকরা জল দিয়ে প্রাণীটির পাগুলি আর দেহের ভিতরের অংশগুলি ধুয়ে নেবে| যাজকদের অবশ্যই পশুটির সমস্ত অংশই উত্সর্গ করতে হবে| তারা বেদীর ওপর প্রাণীটিকে পুড়িয়ে নেবে| এ হল হোমবলি, আগুনে প্রস্তুত নৈবেদ্য| এই সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে| 14 “যখন কোন লোক প্রভুকে হোমবলি হিসেবে একটি পাখী উপহার দেয়, তখন সেই পাখীটি যেন একটি ঘুঘু কিংবা একটি কচি পাযরা হয়| 15 যাজক অবশ্যই নৈবেদ্যটিকে বেদীর কাছে আনবে| তারপর সে পাখীর মাথাটি টেনে ছিঁড়ে নেবে এবং বেদীর ওপর পাখীটিকে পোড়াবে| পাখীটির রক্ত বেদীর পাশে ফেলে দেবে| 16 যাজক অবশ্যই পাখীটির গলার থলিটা টেনে নেবে, পালকগুলিও সরাবে এবং সেগুলিকে বেদীর পূর্ব দিকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে| বেদী থেকে ছাই সরিয়ে রাখার এটাই হল জায়গা| 17 যাজক পাখীটির ডানার জায়গাটা ছিঁড়ে ফেলবে কিন্তু পাখীটিকে দুভাগ করবে না| তারপর পাখীটিকে বেদীর উপর কাঠের ওপরকার আগুনে পোড়াবে| এটা হল হোমবলি, আগুনে প্রস্তুত নৈবেদ্য| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে|
1 “যদি কেউ প্রভু ঈশ্বরকে শস্য নৈবেদ্য দান করে, তবে তার নৈবেদ্য যেন গুঁড়ো ময়দা থেকে তৈরী হয়| এই ময়দার ওপর লোকটি অবশ্যই তেল ঢালবে এবং তার ওপর কুন্দুরু রাখবে| 2 তারপর সে সেটা হারোণের পুত্রদের কাছে অর্থাত্ যাজকদের কাছে আনবে| সে তেল আর সুগন্ধি মেশানো এক মুঠো ময়দার গুঁড়ো নেবে| যাজক তখন বেদীর ওপরে এই স্মারক নৈবেদ্য পোড়াবে| এই নৈবেদ্য আগুনে প্রস্তুত| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে| 3 হারোণ এবং তার পুত্রদের জন্য থাকবে বাকি পড়ে থাকা শস্য নৈবেদ্য| প্রভুকে দেওয়া আগুনে তৈরী এই নৈবেদ্য অত্যন্ত পবিত্র| 4 “যখন কোন লোক উনুনে সেঁকা রুটি নৈবেদ্য উপহার দেয় তখন তা যেন অবশ্যই খামিরবিহীন রুটি হয় ইস্রায়েলে মিহি ময়দা ও তেল দিয়ে তৈরী, অথবা যেন তেল মেশানো সরুচাকলী হয়| 5 যদি তুমি সেঁকাপাত্রে সেঁকা শস্য নৈবেদ্য আনো, তা হলে তা যেন অবশ্যই তেল মেশানো খামিরবিহীন গুঁড়ো ময়দার তৈরী হয়| 6 তুমি অবশ্যই সেটা টুকরো টুকরো করবে এবং তার ওপর তেল ঢালবে| এটি হল শস্য নৈবেদ্য| 7 যদি তুমি কড়ায় ভাজা শস্য নৈবেদ্য নিয়ে আসো, তখন যেন তা তেল মেশানো গুঁড়ো ময়দা দিয়ে তৈরী হয়| 8 “তুমি অবশ্যই এই সব জিনিস থেকে তৈরী শস্য নৈবেদ্যগুলি প্রভুর কাছে আনবে| ইস্রায়েলেজকের কাছে সেগুলি নিয়ে ইস্রায়েলেবে এবং সে সেগুলিকে বেদীর ওপর রাখবে| 9 তারপর যাজক শস্য নৈবেদ্যর কিছু অংশ নেবে এবং এই স্মারক নৈবেদ্য, বেদীর ওপর পোড়াবে| এই নৈবেদ্য আগুনের তৈরী| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে| 10 পড়ে থাকা শস্য নৈবেদ্য হারোণ ও তার পুত্রদের জন্য| প্রভুকে দেওয়া এই আগুনে তৈরী নৈবেদ্য অত্যন্ত পবিত্র| 11 “তোমরা অবশ্যই খামির মেশানো কোন শস্য নৈবেদ্য প্রভুকে দেবে না| তোমরা খামির বা মধু আগুনে ঝলসে প্রভুকে নৈবেদ্য হিসেবে দেবে না| 12 প্রথম ফসল থেকে আনা নৈবেদ্য হিসেবে তোমরা খামির ও মধু প্রভুর কাছে আনতে পারো, কিন্তু খামির ও মধু সুগন্ধ হয়ে উবে যাওয়ার জন্য বেদীর ওপর যেন পোড়ানো না হয়| 13 তোমাদের আনা প্রতিটি শস্য নৈবেদ্যে তোমরা অবশ্যই লবণ দেবে| ঈশ্বরের নিয়মের লবণ যেন তোমাদের শস্য নৈবেদ্য থেকে বাদ না পড়ে| তোমাদের সমস্ত নৈবেদ্যর সঙ্গে অবশ্যই লবণ আনবে| 14 “যখন তোমরা প্রথম ফসল থেকে শস্য নৈবেদ্য প্রভুর কাছে আনবে, তখন অবশ্যই আগুনে ঝলসানো শস্যের মাথা আনবে| এইগুলি অবশ্যই টাটকা শস্যের চূর্ণ করা মাথা হবে| এই হবে তোমাদের প্রথম ফসল থেকে আনা শস্য নৈবেদ্য| 15 তোমরা অবশ্যই তেল আর সুগন্ধি তার ওপর ঢালবে| এই হল শস্য নৈবেদ্য| 16 যাজক অবশ্যই গুঁড়ো শস্যের কিছু অংশ, তেল এবং সমস্ত ধূনা প্রভুর কাছে স্মারক নৈবেদ্য হিসেবে পোড়াবে|
1 “মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে যখন কেউ ঈশ্বরের কাছে উত্সর্গ দেয় তখন প্রাণীটি একটি পুরুষ বা স্ত্রী গরু হতে পারে| কিন্তু প্রাণীটির অবশ্যই যেন কোন দোষ না থাকে| 2 লোকটি প্রাণীটির মাথায় হাত রাখবে এবং সমাগম তাঁবুতে ঢোকার মুখে প্রাণীটিকে হত্যা করবে, তারপর বেদীর ওপরে আর তার চারপাশে হারোণের পুত্ররা অর্থাত্ যাজকরা রক্ত ছিযিে দেবে| 3 মঙ্গল নৈবেদ্য হল প্রভুর প্রতি আগুনে প্রস্তুত এক নৈবেদ্য| প্রাণীটির দেহের ভিতরে ও বাইরে যে চর্বি আছে, যাজকরা তা অবশ্যই উত্সর্গ করবে| 4 তারা দুটি বৃক্ক এবং যে চর্বি নিতম্বের নীচে তাদের ঢেকে রেখেছে সেগুলো উত্সর্গ করবে| যে চর্বি য়কৃত্কে ঢেকে রেখেছে তারা সেটিও উত্সর্গ করবে এবং বৃক্কের সঙ্গে এটিকে সরিয়ে রাখবে| 5 তারপর হারোণের পুত্ররা বেদীর ওপর চর্বি পোড়াবে| আগুনের ওপরকার কাঠে রাখা জ্বলন্ত নৈবেদ্যর ওপর তা তারা রাখবে| এটা হল আগুনে প্রস্তুত নৈবেদ্য| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে| 6 “যখন কোন লোক প্রভুর প্রতি মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে একটি মেষ বা একটি ছাগল দান করে, তখন প্রাণীটি পুরুষ অথবা স্ত্রী জাতীয হতে পারে; কিন্তু তাতে যেন অবশ্যই কোন দোষ না থাকে| 7 যদি সে তার নৈবেদ্য হিসেবে একটি মেষশাবক আনে তবে সে তা প্রভুর সামনে আনবে| 8 সে অবশ্যই তার হাত প্রাণীটির মাথার ওপর রাখবে আর সমাগম তাঁবুর সামনে প্রাণীটিকে হত্যা করবে| তারপর হারোণের পুত্ররা বেদীর চারপাশে প্রাণীটির রক্ত ছিযিে দেবে| 9 আগুনে প্রস্তুত নৈবেদ্যর মত করে তারা মঙ্গল নৈবেদ্যর একটা অংশ প্রভুর প্রতি উত্সর্গ করবে| তারা অবশ্যই চর্বি, সমগ্র চর্বিযুক্ত লেজ এবং যে চর্বি প্রাণীটির ভিতর অংশের সমস্ত অঙ্গগুলোকে ঢেকে রাখে তা উত্সর্গ করবে| (পিছনের হাড়ের একেবারে লাগোযা অংশ থেকে লেজটা সে কেটে দেবে|) 10 কটির কাছের দুটি বৃক্ক ও তাদের ঢেকে রাখা চর্বিকে তারা যেন দান করে| তারা অবশ্যই য়কৃতের চর্বি অংশটুকুও দান করবে| তারা অবশ্যই বৃক্ক সমেত সেটিকে সরিয়ে নেবে| 11 তারপর বেদীর ওপর যাজকরা সেগুলিকে পোড়াবে| প্রভুর প্রতি আগুনের নৈবেদ্যই হল মঙ্গল নৈবেদ্য কিন্তু এটা সাধারণ মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে| 12 “যদি নৈবেদ্যটি একটি ছাগল হয় তা হলে লোকটি তাকে প্রভুর সামনে আনবে| 13 লোকটি ছাগলটির মাথায় তার হাত রাখবে এবং তাকে সমাগম তাঁবুর সামনে হত্যা করবে| তারপর হারোণের পুত্ররা বেদীর চারপাশে ছাগলের সে রক্ত ছিযিে দেবে| 14 প্রভুর প্রতি আগুনের নৈবেদ্য হিসেবে যাজকরা মঙ্গল নৈবেদ্যর কিছু অংশ অবশ্যই দান করবে| প্রাণীটির ভিতরের অংশগুলির ওপরের ও চারপাশের চর্বি তারা অবশ্যই উত্সর্গ করবে| 15 তারা নীচের পিছনের দিকের মাংসপেশীর কাছাকছি দুটি বৃক্ক ও তাদের চর্বির আচ্ছাদন অবশ্যই উত্সর্গ করবে| তারা য়কৃতের চর্বি অংশও দেবে| তারা অবশ্যই এটাকে বৃক্কসহ সরিয়ে দেবে| 16 এরপর যাজকরা অবশ্যই এগুলি বেদীর ওপর পোড়াবে| মঙ্গল নৈবেদ্য হল আগুনে প্রস্তুত এক নৈবেদ্য| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে| এটিও সাধারণ মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে; কিন্তু শ্রেষ্ঠ অংশগুলি অর্থাত্ চর্বি, প্রভুর জন্য নির্দিষ্ট| 17 বংশপরম্পরায এই নিয়ম চিরকালের জন্য তোমাদের মধ্যে চলতে থাকবে| যেখানেই তোমরা থাক তোমরা অবশ্যই কখনও চর্বি বা রক্ত খাবে না|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: যদি কোন মানুষ অজান্তে পাপ করে ফেলে এবং প্রভু ইস্রায়েলে করতে বারণ করেছেন তেমন কোন কাজ করে, তখন মানুষটি অবশ্যই এই কাজগুলি করবে: 3 “যদি অভিষিক্ত যাজক এমন একটা ভুল করে বসে ইস্রায়েলেতে মানুষ তার পাপে দোষী হয়ে ইস্রায়েলেয, তখন যাজক তার পাপের জন্য অবশ্যই প্রভুর কাছে একটি নৈবেদ্য দান করবে| যাজক অবশ্যই কোন দোষ নেই এমন একটি এঁড়ে বাছুর উত্সর্গ করবে| পাপ নৈবেদ্য হিসেবে সে এঁড়ে বাছুরটি প্রভুকে উত্সর্গ করবে| 4 অভিষিক্ত যাজক এঁড়ে বাছুরটিকে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে আনবে| তারপর তার হাত ষাঁড়ের মাথায় রাখবে এবং প্রভুর সামনে ষাঁড়টাকে হত্যা করবে| 5 সেই যাজক বাছুরটি থেকে কিছুটা রক্ত নিয়ে তা সমাগম তাঁবুর ভেতরে নিয়ে আসবে| 6 পরে তার আঙুল রক্তের মধ্যে ডোবাবে এবং পবিত্রতম জায়গার আচ্ছাদনের সামনে প্রভুর সামনে সাতবার সেই রক্ত ছেটাবে| 7 যাজক কিছুটা রক্ত সুগন্ধী বেদীর কোণে লাগাবে| (এই বেদীটি সমাগম তাঁবুতে প্রভুর সামনে রযেছে|) ষাঁড়ের সব রক্তটাই তাকে হোম বেদীর নীচে ঢেলে দিতে হবে| (এই বেদীটি সমাগম তাঁবুতে ঢোকার মুখের বেদী|) 8 পাপের জন্য নৈবেদ্যর বাছুরটির সমস্ত চর্বি সে বের করে নেবে| ভেতরের অংশগুলির ওপরকার ও চারপাশের চর্বিও সে নিয়ে নেবে| 9 সে অবশ্যই বৃক্ক এবং কটির নীচে যে চর্বি তাদের ঢেকে রাখে তা নেবে| সে য়কৃতের চর্বিও অবশ্যই নেবে| সে এটা বৃক্কের সাথেই বের করে নেবে| 10 মঙ্গল নৈবেদ্যর ষাঁড়টির উত্সর্গীকরণের মতই যাজক অবশ্যই এই সমস্ত অংশগুলো উত্সর্গ করবে| হোম নৈবেদ্যর জন্য যে বেদী, তার ওপর যাজক অবশ্যই প্রাণীটির অংশগুলো পোড়াবে| 11 কিন্তু যাজক অবশ্যই ষাঁড়টির চামড়া, ভেতরের অংশগুলো এবং শরীরের বর্য়্জ পদার্থ এবং মাথা ও পাযের সমস্ত মাংস সরিয়ে রাখবে| যাজক সেই সব অংশ তাঁবুর বাইরে বিশেষ জায়গায়-যেখানে ছাইগুলো ঢেলে রাখা হয়, সেখানে বয়ে নিয়ে আসবে| সেখানে অবশ্যই সে কাঠের ওপর সেই সব অংশ রেখে পোড়াবে| যেখানে ছাইগুলো ঢালা আছে সেখানেই ষাঁড়টিকে পোড়াতে হবে| 12 13 “এমনও হতে পারে যে সমগ্র ইস্রাযেল জাতি না জেনে পাপ করেছে| তারা হয়তো এমন অনেক কাজ করে বসেছে যেগুলি প্রভু তাদের না করতেই আজ্ঞা দিয়েছেন| যদি তাই ঘটে তারা দোষী হবে| 14 যদি তারা সেই পাপ সম্বন্ধে বুঝতে পারে, তবে তারা সমগ্র জাতির জন্য পাপের নৈবেদ্য হিসেবে একটা এঁড়ে বাছুর উত্সর্গ করবে| তারা অবশ্যই এঁড়ে বাছুরটিকে সমাগম তাঁবুতে নিয়ে আসবে| 15 লোকদের মধ্যেকার প্রবীণরা প্রভুর সামনে ষাঁড়টির মাথায় হাত রাখবে এবং তখন একজন প্রভুর সামনে এঁড়ে বাছুরটিকে হত্যা করবে| 16 অভিষিক্ত যাজক যে তখন কর্তব্যরত ছিল, সে কিছুটা রক্ত সমাগম তাঁবুতে নিয়ে আসবে| 17 যাজকটি তার আঙুল রক্তের মধ্যে ডোবাবে এবং তা সাতবার প্রভুর সামনে পর্দার সম্মুখভাগে ছিটিয়ে দেবে| 18 তারপর যাজক কিছুটা রক্ত বেদীর কোণগুলোয ফেলবে| (এই বেদী সমাগম তাঁবুর মধ্যে প্রভুর সামনে রযেছে|) যাজক সমস্ত রক্ত জ্বলন্ত নৈবেদ্যর বেদীর মেঝেতে ঢালবে| (এই বেদী সমাগম তাঁবুর মধ্যে ঢোকার মুখে রযেছে|) 19 এরপর যাজক প্রাণীটির সমস্ত চর্বি নেবে এবং তা বেদীর ওপর পোড়াবে| 20 যাজক পাপ নৈবেদ্য যেমনভাবে ষাঁড়টিকে উত্সর্গ করেছিল সেইভাবেই এই সমস্ত অংশগুলো উত্সর্গ করবে| এইভাবে যাজক লোকদের শুচি করে তুলবেএবং ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের ক্ষমা করবেন| 21 যাজক অবশ্যই এই ষাঁড়টিকে শিবিরের বাইরে আনবে এবং তা পোড়াবে, যেমনভাবে সে প্রথম ষাঁড়কে পুড়িয়েছিল| সমগ্র সম্প্রদাযের পক্ষে এটাই হল পাপ মোচনের নৈবেদ্য| 22 “একজন শাসক অজান্তে পাপ করতে পারে এবং তার প্রভু ঈশ্বর ইস্রায়েলে ইস্রায়েলে করতে অবশ্যই নিষেধ করেছিলেন, তার মধ্যে কোন একটা সে করে ফেলতে পারে| এই ভুল করার জন্য শাসক দোষী হবে| 23 যদি শাসক তার পাপ সম্বন্ধে বুঝতে পারে, তা হলে সে অবশ্যই কোন দোষ নেই এমন একটি পুরুষ ছাগল আনবে| সেটাই হবে তার নৈবেদ্য| 24 শাসকটি অবশ্যই তার হাত ছাগলটির মাথায় রাখবে আর প্রভুর সামনে যেখানে হোমবলি হত্যা করা হয় সেখানেই তাকে হনন করবে| ছাগলটি হল দোষমোচনের বলি| 25 পাপ নৈবেদ্যর কিছুটা রক্ত যাজক অবশ্যই তার আঙুলে নেবে এবং জ্বলন্ত নৈবেদ্যর বেদীর কোণগুলোয তা লাগাবে| বাকি রক্তটুকু যাজক অবশ্যই বেদীর মেঝেতে ঢেলে ফেলবে| 26 আর ছাগলটির সমস্ত মেদ যাজক অবশ্যই বেদীর ওপর পোড়াবে; মঙ্গল নৈবেদ্য দানের মেদ যেমনভাবে সে পোড়ায সেইভাবে যাজক অবশ্যই তা পোড়াবে| এইভাবে যাজক সেই শাসককে তার পাপ থেকে শোষণ করবে এবং ঈশ্বর তাকে ক্ষমা করবেন| 27 “সাধারণ মানুষের কেউ যদি অজান্তে পাপ করে এবং প্রভু ইস্রায়েলে নিষিদ্ধ করেছেন এমন কিছু যদি করে তাহলে সে তার অপরাধের জন্য আইনের কাছে দাযবদ্ধ থাকবে| 28 যদি সেই ব্যক্তিটির নিজের পাপ সম্বন্ধে অবগত হয় তবে সে নিশ্চয়ই দোষ নেই এমন একটি স্ত্রী ছাগল আনবে| এইটিই হবে লোকটির পাপের জন্য নৈবেদ্য| পাপ করেছে বলে সে অবশ্যই এই ছাগলটি আনবে| 29 সে তার হাত প্রাণীটির মাথায় রাখবে এবং হোমবলির জায়গায় তাকে হত্যা করবে| 30 তারপর যাজক ছাগলটির কিছুটা রক্ত তার আঙুলে নেবে এবং হোমবলির বেদীর কোণগুলোতে সেই রক্ত ছিযিে দেবে| এরপর যাজক ছাগের বাকি রক্তটুকু অবশ্যই বেদীর মেঝেতে ঢেলে দেবে| 31 যেমনভাবে মঙ্গল নৈবেদ্য থেকে মেদ দেওয়া হয়, সেইভাবে যাজক অবশ্যই ছাগলটির সমস্ত মেদ উত্সর্গ করবে| যাজক অবশ্যই প্রভুর উদ্দেশ্যে সুগন্ধি হিসেবে বেদীর ওপর তা পোড়াবে| এইভাবে যাজক সেই মানুষটিকে তার পাপ মোচনের প্রাযশ্চিত্ত করাবে| এবং ঈশ্বর সেই ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন| 32 “পাপের নৈবেদ্য হিসেবে যদি সেই লোকটি একটি মেষশাবক আনে তাহলে তাকে অবশ্যই কোন দোষ নেই এমন একটি স্ত্রী শাবক আনতে হবে| 33 লোকটি অবশ্যই তার হাত প্রাণীটির মাথায় রাখবে এবং যেখানে তারা হোমবলি হত্যা করে সেখানেই দোষ মোচনের নৈবেদ্যকে হত্যা করবে| 34 যাজক তার আঙুলে অবশ্যই সেই পাপমোচনের নৈবেদ্য থেকে কিছুটা রক্ত নেবে এবং হোমবলির বেদীর কোণগুলিতে তা লাগাবে| এরপর যাজক মেষশাবকটার বাকী সব রক্ত বেদীর মেঝেয ঢালবে| 35 যেমনভাবে মঙ্গল নৈবেদ্যগুলির মধ্যে মেষশাবকের মেদ মাংস উত্সর্গ করা হয়, যাজক সেইভাবে মেষশাবকটির সমস্ত মেদ উত্সর্গ করবে| সেটাকে যাজক যেমনভাবে কোন হোমবলি প্রভুকে দেওয়া হয়, সেইভাবে বেদীর ওপর তাকে পোড়াবে| এইভাবে যাজক সেই ব্যক্তিটিকে তার কৃত পাপ কর্মের প্রাযশ্চিত্ত করাবে এবং ঈশ্বর সেই লোকটিকে ক্ষমা করবেন|
1 “কোন মানুষ একটি সতর্কবাণী শুনতে পারে, অথবা একজন মানুষ এমন কিছু শুনে বা দেখে থাকতে পারে ইস্রায়েলে অন্য লোকদের বলা উচিত্| যদি সেই লোকটি ইস্রায়েলে দেখেছে বা শুনেছে তা লোকদের না বলে, তা হলে সে এই পাপের জন্য দোষী হবে| 2 অথবা লোকটি হয়ত অশুচি কোন কিছু স্পর্শ করতে পারে| যেমন গৃহপালিত কোন প্রাণীর মৃতদেহ অথবা কোন অশুচি প্রাণীর মৃতদেহ| ঐ লোকটি নাও জানতে পারে যে সে ঐসব জিনিস স্পর্শ করেছে; কিন্তু তবু সে ভুল করার কারণে দোষী হবে| 3 এমন অনেক বিষয় আছে ইস্রায়েলে মানুষের কাছ থেকে আসে এবং মানুষকে অশুচি করে| একজন মানুষ না জেনেই অন্য একজনের কাছ থেকে এসবের যে কোন একটা স্পর্শ করতে পারে| যখন সেই মানুষ জানতে পারে যে সে অশুচি জিনিস স্পর্শ করেছে, তখন সে দোষী হবে| 4 একজন মানুষ ভাল অথবা মন্দ কিছু চিন্তা না করেই হঠকারী প্রতিজ্ঞা করে ফেলতে পারে এবং এসম্পর্কে ভুলে যেতে পারে কিন্তু যখন তার প্রতিজ্ঞার কথাটা মনে পড়বে তখনই সে হবে দোষী কারণ সে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি| 5 সুতরাং যদি কোন মানুষ এগুলির মধ্যে কোন একটি বিষয়ে দোষী হয় তাহলে সে যে কাজটা ভুল করে করেছে তা অবশ্যই স্বীকার করবে| 6 সে অবশ্যই তার কৃত দোষের জন্য প্রভুর কাছে আসবে| সে অবশ্যই একটা স্ত্রী মেষশাবক বা স্ত্রী ছাগল পাপমোচনের নৈবেদ্য হিসেবে আনবে| তারপর যাজক সেই মানুষটির কৃত পাপকর্ম থেকে তাকে মুক্ত করার জন্য ইস্রায়েলে কিছু করার করবে| 7 “যদি লোকটি মেষশাবক দিতে সমর্থ না হয় তবে সে অবশ্যই দুটি ঘুঘু পাখী বা দুটি পাযরা ঈশ্বরের কাছে আনবে| এগুলো হল তার কৃত পাপের জন্য নৈবেদ্য| একটি পাখী হবে অবশ্যই তার পাপের নৈবেদ্য এবং অপরটি হবে হোমের নৈবেদ্য| 8 লোকটি অবশ্যই সেগুলি ইস্রায়েলেজকের কাছে আনবে| প্রথমে যাজক পাপ নৈবেদ্য হিসেবে একটি পাখীকে উত্সর্গ করবে| যাজক পাখীর ঘাড় থেকে মাথাটা আলাদা করে নেবে, কিন্তু পাখীটিকে দুভাগে ভাগ করবে না| 9 যাজক অবশ্যই বেদীর পাশে পাপের জন্য উত্সর্গীকৃত এই নৈবেদ্যর রক্তকে ছিটিয়ে দেবে| তারপর বাকি রক্ত বেদীর তলদেশে ঢেলে দেবে| এই হল কৃত পাপের জন্য নৈবেদ্য| 10 এরপর যাজক দ্বিতীয পাখীটিকে অবশ্যই হোমবলির নিয়মানুইস্রায়েলেযী উত্সর্গ করবে| এইভাবে যাজক সেই মানুষটিকে তার কৃত পাপ থেকে মোচনের প্রাযশ্চিত্ত করাবে এবং ঈশ্বর সেই মানুষটিকে ক্ষমা করবেন| 11 “যদি মানুষটি দুটি ঘুঘু পাখী বা দুটি পাযরা দিতে সমর্থ না হয় তাহলে সে অবশ্যই 8 কাপ গুঁড়ো ময়দা আনবে| এটাই হবে তার পাপের জন্য নৈবেদ্য| লোকটি কোনক্রমেই ময়দায কোন তেল দেবে না| তা পাপ মোচনের নৈবেদ্য বলে সে এতে কুন্দুরু দেবে না| 12 লোকটি অবশ্যই ময়দার গুঁড়ো ইস্রায়েলেজকের কাছে আনবে| যাজক তা থেকে এক মুঠো ময়দা নেবে| এ হবে এক স্মরনার্থক নৈবেদ্য| বেদীর ওপর যাজক গুঁড়ো ময়দা পোড়াবে| এ হল ঈশ্বরের প্রতি আগুনে পোড়ানো এক নৈবেদ্য| এ নৈবেদ্য পাপের জন্য উত্সর্গ নৈবেদ্য| 13 এইভাবে যাজক মানুষটিকে শোধন করবে এবং ঈশ্বর সেই মানুষটিকে ক্ষমা করবেন| যেটুকু শস্য নৈবেদ্য পড়ে থাকবে, তা সাধারণ শস্য নৈবেদ্যর মতই ইস্রায়েলেজকের জন্য হবে|” 14 প্রভু মোশিকে বললেন, 15 “কোন মানুষ আকস্মিকভাবে প্রভুর পবিত্র জিনিস অপবিত্র করতে পারে| সেক্ষেত্রে সেই লোকটি তখন কোন খুঁত নেই এমন একটি পুরুষ মেষ অবশ্যই আনবে| এটাই হবে প্রভুর প্রতি দোষের জন্য দেওয়া নৈবেদ্য| তুমি অবশ্যই পবিত্র স্থানের মাপ কাঠি ব্যবহার করবে এবং পুরুষ মেষটির একটি মূল্য ঠিক করবে| 16 পবিত্র জিনিসের সঙ্গে সে যে পাপ করেছে তার জন্য লোকটি অবশ্যই তার জরিমানা দেবে| সে ইস্রায়েলে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা দেবে ও তার সঙ্গে মূল্যের এক পঞ্চমাংশ য়োগ করবে এবং সেই মূল্য যাজককে দেবে| এইভাবে পাপমোচনের নৈবেদ্যর মেষটি উত্সর্গ করে যাজক সেই লোকটিকে শুচি করবে এবং ঈশ্বর ঐ ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন| 17 “যদি কোন ব্যক্তি পাপ করে এবং প্রভুর আজ্ঞাগুলির কোন একটি লঙঘন করে, এমনকি যদি সে তা না জেনে করে থাকে, সে দোষী সাব্যস্ত হবে এবং তার পাপের জন্য দাযী হবে| 18 সেই লোকটিকে ইস্রায়েলেজকের কাছে কোন খুঁত নেই এমন একটি পুরুষ মেষ আনতে হবে| সেই পুরুষ মেষ হবে দোষ মোচনের নৈবেদ্য| এইভাবে অজান্তে লোকটি যে পাপ করেছিল তা থেকে যাজক তাকে মুক্ত করবে এবং ঈশ্বর সেই মানুষটিকে ক্ষমা করবেন| 19 এমন কি, সে যে পাপ করেছে এটা না জানলেও লোকটি দোষী সুতরাং সে প্রভুকে অবশ্যই তার দোষার্থক নৈবেদ্য দান করবে|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “একজন মানুষ হয়তো এইসব পাপের মধ্যে কোন একটা করে প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করতে পারে| কারোর কোন বিষয় দেখাশোনা করার সময় সে ব্যাপারে কি ঘটেছে সে সম্বন্ধে মিথ্য়া কথা বলতে পারে, সে কিছু চুরি করতে পারে অথবা কাউকে ঠকাতে পারে| 3 অন্যের হারিযে ইস্রায়েলেওযা জিনিস পেয়ে মিথ্য়ে বলতে পারে, অথবা তার প্রতিশ্রুতি অনুইস্রায়েলেযী কাজ নাও করতে পারে| অথবা কোন মানুষ অন্য কোন রকমের অন্যায় করতে পারে| 4 কিন্তু সে এই ধরণের কোন কাজ করলে পাপের দোষে দোষী হবে, সুতরাং সে ইস্রায়েলে কিছু চুরি করেছিল, সে অন্যকে ঠকিযে ইস্রায়েলে কিছু নিয়েছিল তা সে অবশ্যই ফিরিযে দেবে| অথবা অন্য লোকরা তাকে ইস্রায়েলে কিছু তত্ত্বাবধান করার জন্য দিয়েছিল অথবা যেসব জিনিস সে পেয়েও মিথ্য়ে বলেছিল, সব কিছু সে অবশ্যই ফিরিযে দেবে| 5 সে ইস্রায়েলে কিছু মিথ্য়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার পুরো দাম দেবে এবং তারপর সে অতিরিক্ত জিনিসটির এক পঞ্চমাংশের মত দামও অবশ্যই ফেরত্ দেবে| সে প্রকৃত অধিকারীর কাছেই সেই অর্থ দেবে| যেদিন সে তার দোষার্থক বলি নিয়ে আনবে সেদিন সে এই কাজটি করবে| 6 “ঐ মানুষটি অবশ্যই ইস্রায়েলেজকের কাছে দোষার্থক বলি নিয়ে আসবে| তা অবশ্যই হবে মেষের দল থেকে আনা একটা পুরুষ মেষ| সেই পুরুষ মেষের মধ্যে যেন কোন খুঁত না থাকে| যাজক ইস্রায়েলে বলবে এর দাম হবে তাই| এটা হবে প্রভুর কাছে প্রদত্ত এক দোষার্থক বলি| 7 এরপর যাজক প্রভুর কাছে ইস্রায়েলেবে এবং লোকটির পাপ মোচনের জন্য প্রযোজনীয কাজ করবে এবং প্রভু লোকটির সমস্ত কাজ ক্ষমা করে দেবেন যেগুলির জন্য সে দাযী ছিল|” 8 প্রভু মোশিকে বললেন, 9 “হারোণ এবং তার পুত্রদের এই নির্দেশ দাও: এটা হল হোমবলির নিয়ম| বেদীর অগ্নিকুণ্ডের ওপর সকাল না হওয়া পর্য়ন্ত হোমবলি সারা রাত ধরে থাকবে| বেদীর আগুন অবশ্যই একটানা বেদীটির ওপরে জ্বলতে থাকবে| 10 যাজক অবশ্যই মসীনার অন্তর্বাস পরবে এবং তার উপর পরবে মসীনা বস্ত্রের পোশাক| বেদীর ওপর আগুনে দগ্ধ যে নৈবেদ্যসমূহ ছাই হয়ে ইস্রায়েলেবে যাজক সেই পরিত্যক্ত ছাই তুলে নিয়ে সেই সমস্ত ছাই বেদীর পাশে রাখবে| 11 এরপর যাজক এই পোশাক ছেড়ে অন্য পোশাক পরবে, তারপর সে তাঁবুর বাইরে অন্য এক বিশেষ জায়গায় ছাইগুলিকে নিয়ে ইস্রায়েলেবে| 12 কিন্তু বেদীর আগুন অবশ্যই বেদীর ওপর জ্বলতে থাকবে| তাকে কোন মতেই নিভিযে দেওয়া চলবে না| যাজক প্রতিদিন সকালে বেদীর ওপরে কাঠ দিয়ে জ্বালাবে| সে বেদীর ওপরে কাঠ সাজিযে মঙ্গল নৈবেদ্য সমূহের চর্বি অবশ্যই পোড়াবে| 13 বেদীর ওপর আগুন অবিরাম জ্বলতে থাকবে, তা যেন কোন মতেই না নিভে ইস্রায়েলেয| 14 “এটা হল শস্য নৈবেদ্য দানের নিয়ম: বেদীর সামনে প্রভুর কাছে হারোণের পুত্ররা এই নৈবেদ্য অবশ্যই আনবে| 15 শস্য নৈবেদ্য সমূহের মধ্য় থেকে যাজক এক মুঠো ভর্তি গুঁড়ো ময়দা নেবে| সেই শস্য নৈবেদ্যর সাথে যেন তেল এবং সুগন্ধী নিশ্চিতভাবে থাকে| যাজক বেদীর ওপর শস্য নৈবেদ্যকে পোড়াবে| এটা হবে প্রভুর প্রতি এক স্মরনার্থক নৈবেদ্য, এর গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 16 “শস্য নৈবেদ্যর অবশিষ্ট ইস্রায়েলে পড়ে থাকবে হারোণ এবং তার পুত্ররা অবশ্যই তা খাবে| খামির না দিয়ে তৈরী এক ধরণের রুটিই হল শস্য নৈবেদ্য| কোনো পবিত্র স্থানে যাজকরা অবশ্যই এই রুটি খাবে; সমাগম তাঁবুর প্রাঙ্গণের মধ্যেই এটা খাবে| 17 শস্য নৈবেদ্যটি যেন কখনই খামির দিয়ে তৈরী করা না হয়| আগুন দিয়ে তৈরী আমাকে দেওয়া নৈবেদ্যসমূহ আমি যাজকদের অংশ হিসেবে দিয়েছি| এটা অত্যন্ত পবিত্র, দান করা পাপ নৈবেদ্য এবং দোষ নৈবেদ্যর মত| 18 হারোণের সমস্ত সন্তানদের মধ্যে প্রত্যেকটি পুরুষ সন্তান আগুনে প্রস্তুত প্রভুর প্রতি নিবেদিত নৈবেদ্যসমূহ খেতে পারে| এটা তোমাদের বংশপরম্পরাভাবে চিরকালের নিয়ম| এই সমস্ত নৈবেদ্য স্পর্শের দ্বারাই সেই সব মানুষদের পবিত্রতা আনে|” 19 প্রভু মোশিকে বললেন, 20 “হারোণ আর তার পুত্রদের আমার কাছে এইসব নৈবেদ্য আনতে হবে| যেদিন তারা হারোণকে প্রধান যাজক বলে অভিষিক্ত করবে, সেদিনই তারা এটা করবে| শস্য নৈবেদ্যর জন্য তারা অবশ্যই 8 কাপ গুঁড়ো ময়দা আনবে| (প্রতিদিনের নৈবেদ্য দানের সমযেই এটা দেওয়া হবে|) তারা এর অর্ধেক আনবে সকালে, বাকি অর্ধেক আনবে সন্ধ্যার সময়| 21 গুঁড়ো ময়দার সঙ্গে তেল মেশানো হবে এবং সেঁকার পাত্রে তাকে সেঁকা হবে| তৈরী হয়ে গেলে তুমি অবশ্যই তা ভেতরে আনবে| তুমি নৈবেদ্যটিকে টুকরো টুকরো করে ভাঙ্গবে| এর গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 22 “হারোণের স্থানে বসার জন্য হারোণের উত্তরপুরুষদের থেকে অভিষিক্ত যাজক এই শস্য নৈবেদ্য অবশ্যই প্রভুর কাছে আনবে| এ নিয়ম চিরকাল ধরে চলবে| প্রভুর জন্য শস্য নৈবেদ্য অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে অগ্নিদগ্ধ করতে হবে| 23 ইস্রায়েলেজকের প্রত্যেকটি শস্য নৈবেদ্য অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে পোড়াতে হবে| তা কোন মতেই আহার করা চলবে না|” 24 প্রভু মোশিকে বললেন, 25 “হারোণ ও তার পুত্রদের বলো: এই হল পাপ নৈবেদ্য দানের নিয়ম| যেখানে প্রভুর সামনে হোমবলির বলি হত্যা করা হয়েছিল, সেখানেই পাপ নৈবেদ্যর বলিকেও হত্যা করতে হবে| এটা অত্যন্ত পবিত্র| 26 যে যাজক পাপ নৈবেদ্য উত্সর্গ করছে সে অবশ্যই সেটা খাবে; কিন্তু সে এটা একটা পবিত্র জায়গায় খাবে-জায়গাটা যেন সমাগম তাঁবুর চারপাশের উঠানের মধ্যে হয়| 27 পাপ নৈবেদ্যর মাংস স্পর্শেই একজন মানুষ বা কোন বিষয় পবিত্র হয়ে ওঠে|“যদি ছিটানো রক্তের একটুও কোন মানুষের কাপড়ের ওপর পড়ে তখন অবশ্যই কোন পবিত্র স্থানে যে সেই কাপড় কাচা হয়| 28 মাটির পাত্রে যদি পাপ নৈবেদ্যকে সিদ্ধ করা হয়, তাহলে পাত্রটাকে অবশ্যই ভেঙ্গে ফেলতে হবে| যদি পাপ নৈবেদ্যকে পিতলের তৈরী পাত্রে ফোটানো হয়, তাহলে পাত্রটিকে অবশ্যই মাজতে হবে এবং পরে জলে ধুয়ে নিতে হবে| 29 “যাজক পরিবারের যে কোন পুরুষ পাপ মোচনের নৈবেদ্য খেতে পারবে; এটা খুবই পবিত্র| 30 কিন্তু যদি পাপ মোচনের নৈবেদ্যর রক্ত সমাগম তাঁবুর মধ্যে আনা হয় এবং সেই পবিত্র স্থানে লোকদের শুচি করার জন্য ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেই পাপ মোচনের নৈবেদ্য আগুনে পুড়িয়ে নিতে হবে| যাজকরা সেই পাপ নৈবেদ্য অবশ্যই খাবে না|
1 “দোষ মোচনের বলি উত্সর্গের এগুলি হল নিয়ম: এ অত্যন্ত পবিত্র| 2 একজন যাজক দোষ মোচনের বলি অবশ্যই সেই জায়গায় হত্যা করবে, যেখানে হোমের বলি হত্যা করা হয়, তারপর দোষ মোচনের বলির রক্ত বেদীর সবদিকে ছিটিয়ে দেবে| 3 “যাজক দোষ মোচনের বলির সমস্ত মেদ অবশ্যই উত্সর্গ করবে, মেদসহ লেজ এবং ভিতর অংশের ওপর ছড়িয়ে থাকা মেদ উত্সর্গ করবে| 4 যাজক নৈবেদ্যর দুটি বৃক্ক এবং যে চর্বি কটিদেশের নীচে তাদের ঢেকে রাখে তা উত্সর্গ করবে, য়কৃতের মেদ অংশও নৈবেদ্য হিসাবে দেবে| মুত্রগ্রন্থিগুলির সঙ্গে সে তা ছাড়িযে আনবে| 5 ঐ সমস্ত জিনিস যাজক বেদীর ওপর পোড়াবে| এ হবে প্রভুর প্রতি আগুনে প্রস্তুত এক নৈবেদ্য| এটা হল এক দোষ মোচনের নৈবেদ্য| 6 “ইস্রায়েলেজকের পরিবারের যে কোন পুরুষ দোষ মোচনের বলি ভক্ষণ করতে পারে| এ নৈবেদ্য খুবই পবিত্র, তাই এটা অবশ্যই কোন পবিত্র স্থানে খেতে হবে| 7 দোষ মোচনের নৈবেদ্য পাপ মোচনের নৈবেদ্যরই মতো| এই দুই নৈবেদ্যর জন্য এক নিয়ম| যে যাজক বলির ব্যবস্থা করবে সে খাদ্য হিসেবে মাংস পাবে| 8 যে যাজক বলির ব্যবস্থা করবে সে দগ্ধ নৈবেদ্য থেকে চামড়াও পাবে| 9 প্রদত্ত প্রত্যেক শস্য নৈবেদ্য সেই ইস্রায়েলেজকের অধিকারে আসবে, যে যাজক তা উত্সর্গ করবার ভার নেবে| যাজক পাবে শস্য নৈবেদ্যসমূহ ইস্রায়েলে উনুনে সেঁকা বা ভাজবার পাত্রে অথবা সেঁকার থালায রান্না করা| 10 পুত্রদের অধিকারে থাকবে শস্য নৈবেদ্যসমূহ, সেগুলি শুকনো বা তেল মেশানো হতে পারে| হারোণের পুত্ররা সকলে এই খাদ্যের অংশ নেবে| 11 “প্রভুর কাছে মঙ্গল নৈবেদ্যসমূহ দানের নিয়ম| 12 কোন ব্যক্তি কৃতজ্ঞতা জানাতে মঙ্গল নৈবেদ্য আনতে পারে| যদি সে কৃতজ্ঞতা জানাতে নৈবেদ্য আনে তবে তার খামিরবিহীন তেল মাখানো রুটি, ওপরে তেল দেওয়া পাতলা কিছু রুটি এবং তেল মেশানো গুঁড়ো ময়দার কিছু গোটা পাঁউরুটি আনা উচিত| 13 মঙ্গল নৈবেদ্যসমূহ হল সেই নৈবেদ্য ইস্রায়েলে কোন ব্যক্তি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতেই আনে| সেই নৈবেদ্যর সঙ্গে ব্যক্তিটি খামির দিয়ে তৈরী করা গোটা পাঁউরুটিগুলিও অন্য নৈবেদ্য হিসেবে আনবে| 14 এই সমস্ত রুটির একটি সেই ইস্রায়েলেজকের, যে মঙ্গল নৈবেদ্যর রক্ত ছিযিে দেবে| 15 মঙ্গল নৈবেদ্যর মাংস যেদিন উত্সর্গ করা হবে, সেই দিনেই তা খেতে হবে| একজন মানুষ এই উপহার ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই দেয়; কিন্তু পরের দিন সকালের জন্য মাংসের একটুও যেন পড়ে না থাকে| 16 “কোন মানুষ মঙ্গল নৈবেদ্য আনতে পারে কারণ সে হয়ত ঈশ্বরকে উপহার দিতে চায় অথবা সে হয়ত ঈশ্বরের কাছে বিশেষ মানত করেছিল| যদি এটা সত্য হয় তাহলে যেদিন সে নৈবেদ্য দেয়, সেই দিনেই প্রদত্ত নৈবেদ্য খেযে নিতে হবে| যদি কিছু পড়ে থাকে তা পরের দিন অবশ্যই খেতে হবে| 17 কিন্তু যদি এই নৈবেদ্যর কোন মাংস তৃতীয় দিনেও পড়ে থাকে তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে| 18 যদি কোন ব্যক্তি তৃতীয় দিন তার মঙ্গল নৈবেদ্যর কোন মাংস ভক্ষণ করে তাহলে প্রভু সেই ব্যক্তির প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না| তার নৈবেদ্য প্রভু গ্রহণ করবেন না; সেই নৈবেদ্য হবে অশুচি| আর যদি কোন ব্যক্তি সেই মাংসের কিছু ভক্ষণ করে তা হলে সেই ব্যক্তি নিজে তার দোষের জন্য দাযী হবে| 19 “অশুচি এমন কোন বস্তুর ছোঁযা লাগা মাংস অবশ্যই যেন কেউ না খায়; আগুনে এই মাংস পোড়াবে| প্রত্যেকটি শুচি মানুষ মঙ্গল নৈবেদ্য থেকে মাংস খেতে পারে| 20 কিন্তু যদি কোন অশুচি ব্যক্তি প্রভুর জন্য নির্দিষ্ট মঙ্গল নৈবেদ্যর মাংস খায়, তা হলে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই তার লোকদের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে| 21 “যদি কোন ব্যক্তি কোন অশুচি জিনিস, ইস্রায়েলে মানুষের শরীরের দ্বারা অশুচি হয়েছে বা কোন অশুচি জন্তু বা প্রভু নিষেধ করেছেন এমন কোন জিনিস স্পর্শ করে, তাহলে সেই ব্যক্তি অশুচি হবে| এবং যদি সে মঙ্গল নৈবেদ্যর মাংস খায়, তাহলে তাকে অবশ্যই তার লোকদের থেকে আলাদা করতে হবে|” 22 প্রভু মোশিকে বললেন, 23 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: তোমরা গরু, মেষ বা ছাগলের কোনো চর্বি অবশ্যই খাবে না| 24 যে জন্তু স্বাভাবিক ভাবে মারা গেছে অথবা অন্য জন্তুদের দ্বারা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, তোমরা সে জন্তুর চর্বি ব্যবহার করতে পার; কিন্তু তোমরা কখনোই তা খাবে না| 25 আগুনে পোড়া জন্তু প্রভুর প্রতি প্রদত্ত যদি কোন ব্যক্তি তার চর্বি খায়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে তার সংশ্লিষ্ট লোকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে| 26 “তোমরা যেখানেই বাস করো না কেন কখনও কোন পাখির বা কোন জন্তুর রক্ত পান করবে না| 27 যদি কোন ব্যক্তি রক্ত খায়, তাহলে সেই লোকটিকে অবশ্যই তার লোকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে|” 28 প্রভু মোশিকে বললেন, 29 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: যদি কোন ব্যক্তি প্রভুর কাছে মঙ্গল নৈবেদ্য নিয়ে আসে, তাহলে সেই ব্যক্তি ঐ নৈবেদ্যর অংশ অবশ্যই প্রভুকে দেবে| 30 উপহারের সেই অংশ আগুনে পোড়ানো হবে| সে নিজের হাতে সেই উপহারের অংশ বহন করবে| সেই জন্তুটির চর্বি এবং বক্ষদেশ ইস্রায়েলেজকের কাছে আনবে| প্রভুর সামনে জন্তুটির বক্ষদেশটি তুলে ধরবে| এটাই হবে দোলনীয় নৈবেদ্য| 31 তারপর যাজক বেদীর ওপর চর্বি পোড়াবে; কিন্তু জন্তুর বক্ষদেশ হারোণ এবং তার পুত্রদের অধিকারে থাকবে| 32 তোমরা মঙ্গল নৈবেদ্যর ডান দিকের উরুটিও যাজককে দেবে| 33 মঙ্গল নৈবেদ্যর ডান দিকের উরুটি থাকবে সেই ইস্রায়েলেজকের (হারোণের পুত্রদের) দখলে, যে মঙ্গল নৈবেদ্যর রক্ত আর চর্বি উত্সর্গ করবে| 34 আমি ইস্রায়েলের লোকদের কাছ থেকে দোলনীয় নৈবেদ্যর বক্ষদেশ এবং মঙ্গল নৈবেদ্যর ডান উরু নিচ্ছি এবং সেই বস্তুগুলি আমি হারোণ ও তার পুত্রদের দিয়ে দিচ্ছি| ইস্রায়েলের লোকরা অবশ্যই এই নিয়ম চিরকালের জন্য মেনে চলবে|” 35 ঐগুলি হল প্রভুকে প্রদত্ত আগুনের তৈরী নৈবেদ্যর অংশ ইস্রায়েলে হারোণ ও তার পুত্রদের অধিকার| যখনই হারোণ এবং তার পুত্ররা প্রভুর যাজক হয়ে সেবা করবে তারা উত্সর্গগুলির অংশও পাবে| 36 যাজকদের মনোনীত করার সময় থেকেই প্রভু ঐ সব অংশ যাজকদের দেওয়ার জন্য ইস্রায়েলের লোকদের নির্দেশ দেন| লোকরা অবশ্যই যেন সেই অংশ চিরকালের জন্য যাজকদের দেয়| 37 ঐগুলি হল হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য, পাপমোচনের নৈবেদ্য, দোষমোচনের বলি, মঙ্গল নৈবেদ্য এবং যাজক নির্বাচন সম্পর্কে নিয়মাবলী| 38 সীনয় পর্বতের ওপর প্রভু মোশিকে এই আজ্ঞাগুলি দেন| যেদিন প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের সীনয় মরুভুমির মধ্যে প্রভুর কাছে তাদের নৈবেদ্যসমূহ আনতে আদেশ দিয়েছিলেন, সেদিনই তিনি ঐ বিধিগুলি জানিয়ে দেন|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “হারোণ ও তার পুত্রদের সঙ্গে নাও| সেই সঙ্গে নাও পোশাক-পরিচ্ছদ, অভিষেকের জন্য তেল, পাপমোচনের নৈবেদ্যর ষাঁড়, দুটি পুরুষ মেষ এবং খামিরবিহীন রুটির ঝুড়ি| 3 তারপর লোকদের একসঙ্গে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে নিয়ে এসো|” 4 প্রভুর আদেশ মতই মোশি সব কাজ করল| লোকরা সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে একসঙ্গে দেখা করল| 5 তখন মোশি লোকদের বলল, “প্রভু ইস্রায়েলে আদেশ করেছেন এ হল তাই এবং তা অবশ্য কর্তব্য|” 6 তারপর মোশি হারোণ ও তার পুত্রদের নিয়ে এল| জল দিয়ে সে তাদের ধৌত করল| 7 এরপর মোশি হারোণকে বোনা অঙ্গরক্ষিণী পরালো এবং তার কোমরের চারপাশে কটিবন্ধ জড়াল| তারপর মোশি হারোণের গায়ে পোশাক পরিযে গায়ে এফোদ জড়াল এবং বোনা পটুকাতে গা বেষ্টন করে তা বাঁধল| এইভাবে মোশি হারোণের গায়ে এফোদ পরাল| 8 মোশি হারোণের বুকে বক্ষাবরণ পরিযে দিল| তারপর সে বক্ষাবরণের ভেতরে উরীম ও তূম্মীম রাখল| 9 মোশি হারোণের মাথা লম্বা কাপড় জড়ানো পাগড়ি দিয়ে ঢেকে দিল| এক টুকরো সোনা পাগড়ির সামনেটায বসিযে দিল| এই সোনার টুকরোটা হল পবিত্র মুকুট| প্রভুর আজ্ঞা মতই মোশি এটা করেছিল| 10 এরপর মোশি অভিষেকের তেল নিল এবং পবিত্র তাঁবুর ওপর ও তার মধ্যেকার সমস্ত জিনিসের ওপর তা ছিটিয়ে দিল| এইভাবে মোশি তাদের পবিত্র করল| 11 মোশি বেদীর ওপর ঐ তেলের কিছুটা সাতবার ছিটিয়ে দিল| মোশি বেদীর ওপর এবং তত্সংলগ্ন থালা, গামলায এবং তার তলদেশে তেল ছিটিয়ে সব কিছুকে পবিত্র করল| 12 তারপর কিছুটা অভিষেকের তেল নিয়ে সে হারোণের মাথায় ঢালল, এইভাবে মোশি হারোণকে পবিত্র করল| 13 মোশি এরপর হারোণের পুত্রদের নিয়ে এসে তাদের বোনা অঙ্গরক্ষিণী পরাল| পরে তাদের গায়ে কটিবন্ধ জড়িয়ে দিল| তারপর তাদের মাথায় ফেট্টি বাঁধল| প্রভুর আজ্ঞামতই মোশি এসব করল| 14 এরপর মোশি পাপ মোচন নৈবেদ্যর ষাঁড়টিকে নিয়ে এল| পাপ মোচন নৈবেদ্যর ষাঁড়ের মাথার ওপর হারোণ ও তার পুত্ররা হাত রাখল| 15 তারপর মোশি ষাঁড়টিকে হত্যা করে তার রক্ত সংগ্রহ করল| মোশি তার আঙুল দিয়ে কিছু রক্ত বেদীর সব কোণে লাগাল| এইভাবে মোশি বেদীটিকে বলির উপয়োগী করে তৈরী করল| তারপর সে বেদীর মেঝেয রক্ত ঢেলে দিল| লোকদের পাপ মুক্ত করার জন্য এইভাবে মোশি বেদীটিকে বলির জন্য তৈরী রাখল| 16 সে য়কৃত্ থেকে সব চর্বি বের করে নিল এবং সেই সঙ্গে দুটি বৃক্ক ও তাদের ওপরকার সব চর্বিটুকু নিয়ে সেই বেদীর ওপর তাদের পোড়াল| 17 কিন্তু মোশি ষাঁড়ের চামড়া, তার মাংস এবং শরীরের বর্য়্জ পদার্থকে তাঁবুর বাইরে নিয়ে এল| তাঁবুর বাইরে আগুনে মোশি সেগুলিকে পোড়াল| প্রভুর আজ্ঞামতই মোশি এসব করল| 18 এরপর মোশি হোমবলির জন্য পুরুষ মেষকে নিয়ে এল| হারোণ এবং তার পুত্ররা সেই পুরুষ মেষের মাথায় তাদের হাত রাখল| 19 মোশি তারপর পুরুষ মেষটিকে হত্যা করল| সে বেদীর চারপাশে ও বেদীর ওপরে পুরুষ মেষটির রক্ত ছিটিয়ে দিল| 20 মোশি পুরুষ মেষটিকে টুকরো টুকরো করে কাটল| সে ভিতরের অংশগুলি ও পা জল দিয়ে ধুয়ে দিল, তারপর বেদীর ওপর গোটা পুরুষ মেষটিকে পোড়াল| মোশি মাথা ও শরীরের টুকরোগুলো এবং চর্বি পোড়াল| এ হল আগুনের তৈরী হোমবলি| এর গন্ধ প্রভুকে খুশী করে| প্রভুর আজ্ঞামত মোশি ঐগুলি করল| 21 22 তারপর মোশি অন্য পুরুষ মেষটিকে নিয়ে এল| হারোণ আর তার পুত্রদের যাজক হিসাবে নির্দিষ্ট করার জন্যই এই পুরুষ মেষটি ব্যবহার করা হয়েছিল| তারা এই পুরুষ মেষটির মাথায় তাদের হাত রেখেছিল| 23 এরপর মোশি পুরুষ মেষটিকে হত্যা করল| এর কিছুটা রক্ত সে হারোণের কানের লতিতে, তার ডান হাতের বুড়ো আঙুলে এবং হারোণের ডান পাযের বুড়ো আঙুলের মাথায় ছোঁযাল| 24 তারপর সে হারোণের পুত্রদের বেদীর কাছাকাছি নিয়ে এল| রক্তের কিছুটা তাদের ডান কানের লতিতে, ডান হাতের বুড়ো আঙুলে এবং ডান পাযের বুড়ো আঙুলের মাথায় লাগিয়ে দিল| এরপর সে বেদীর চারপাশে রক্ত ছিযিে দিল| 25 এরপর মোশি চর্বি, লেজ, ভিতরের সমস্ত অংশগুলোর চর্বি, য়কৃত্ ঢাকা চর্বি, বৃক্ক দুটি এবং তাদের চর্বি এবং ডান দিকের উরু নিল| 26 প্রত্যেকদিন প্রভুর সামনে এক ঝুড়ি ভর্ত্তি খামিরবিহীন রুটি রাখা হত| মোশি এই রুটিগুলির একটি, তেল মাখানো রুটির একটি ও একটি খামিরবিহীন পাতলা রুটি নিল| সেই সব রুটির টুকরোগুলো মোশি চর্বির ওপর এবং পুরুষ মেষের ডান উরুর ওপর রাখল| 27 তারপর মোশি সেই সমস্ত কিছু হারোণ ও তার পুত্রদের হাতে দিয়ে দিল| টুকরোগুলোকে মোশি দোলনীয় নৈবেদ্যরূপে প্রভুর সামনে দোলালো| 28 তারপর হারোণ ও তার পুত্রদের হাত থেকে সেগুলিকে নিয়ে মোশি বেদীর হোমবলির ওপর পোড়াল| হারোণ ও তার পুত্রদের যাজক হিসাবে নিয়োগ করার জন্যই এই নৈবেদ্য| এ নৈবেদ্য আগুনের দ্বারা তৈরী নৈবেদ্য| এর গন্ধ প্রভুকে খুশী করে| 29 মোশি বক্ষদেশটা নিয়ে প্রভুর সামনে তা দোলনীয় নৈবেদ্য হিসেবে দোলাল| যাজকদের নিয়োগ করার ব্যাপারে পুরুষ মেষের এই অংশ হল মোশির অংশ| মোশি প্রভুর আজ্ঞামতই এসব কাজ করল| 30 মোশি বেদীর ওপর পড়ে থাকা অভিষেকের তেলের কিছুটা ও কিছুটা রক্ত নিয়ে হারোণের ওপর এবং হারোণের পোশাকের ওপর ছিযিে দিল| হারোণের সঙ্গে সেবারত ছেলেদের এবং তাদের পোশাকের ওপরেও কিছুটা ছিটিয়ে দিল| এইভাবে মোশি হারোণ, তার কাপড়-চোপড়, তার ছেলেদের এবং ছেলেদের কাপড়-চোপড় শুচিশুদ্ধ করল| 31 তারপর মোশি হারোণ ও তার পুত্রদের জিজ্ঞাসা করল, “আমার আদেশ তোমাদের মনে পড়ে তো? আমি বলেছিলাম, ‘হারোণ এবং তার পুত্ররা এই সমস্ত জিনিস অবশ্যই আহার করবে|’ সুতরাং যাজক নির্বাচনের অনুষ্ঠান থেকে রুটির ঝুড়ি আর মাংস নিয়ে নাও| সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে মাংসটাকে সিদ্ধ করো| সেই খানেই মাংস আর রুটি খেও| আমি ইস্রায়েলে বলছি সেইমতো এটা করো| 32 যদি মাংস বা রুটির কোন কিছু পড়ে থাকে তবে তা পুড়িয়ে ফেল| 33 যাজক নির্বাচনের অনুষ্ঠান চলবে সাতদিন ধরে| সেই অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্য়ন্ত তোমরা অবশ্যই সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথ ছাড়বে না| 34 আজ ইস্রায়েলে করা হল, প্রভু সেইসব করতেই আজ্ঞা দিয়েছেন| তোমাদের শুচি করতেই তিনি এই সব আজ্ঞা দিয়েছেন| 35 তোমরা অবশ্যই সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে সাতদিন ধরে দিনরাত থাকবে| যদি তোমরা প্রভুর আজ্ঞা না মানো তাহলে তোমরা মারা ইস্রায়েলেবে| প্রভু আমাকে এইসব আজ্ঞা দিয়েছেন|” 36 তাই হারোণ ও তার পুত্ররা প্রভু মোশিকে ইস্রায়েলে ইস্রায়েলে করতে আজ্ঞা দিয়েছিলেন সেসবই করল|
1 আট দিনের দিন মোশি হারোণ ও তার পুত্রদের এবং সেই সাথে ইস্রায়েলের প্রবীণদেরও ডাকল| 2 মোশি হারোণকে বলল, “একটা ষাঁড় এবং একটা পুরুষ মেষ নিয়ে এসো| এই জন্তুদের মধ্যে অবশ্যই যেন কোন খুঁত না থাকে| ষাঁড়টা হবে পাপ মোচনের নৈবেদ্য আর মেষটা হবে হোমবলির নৈবেদ্য| ঐসব জন্তুদের প্রভুর কাছে নিবেদন করো| 3 ইস্রায়েলের লোকদের বলো, ‘পাপ মোচনের নৈবেদ্যর জন্য একটি পুরুষ ছাগল নাও এবং হোমবলির জন্য একটি বাছুর ও একটি মেষশাবক নাও| বাছুর ও ছাগ শিশু প্রত্যেকটির বযস যেন এক বছর হয়| ঐ সমস্ত জন্তুদের মধ্যে অবশ্যই যেন কোন খুঁত না থাকে| 4 একটা ষাঁড় ও একটা পুরুষ মেষ মঙ্গল নৈবেদ্যর জন্য নাও| ঐসব জন্তু ছাড়াও তেল মেশানো শস্য নৈবেদ্য নেবে এবং এসব প্রভুর কাছে নিবেদন করবে, কারণ আজ প্রভু তোমাদের কাছে আবির্ভূত হবেন|” 5 সুতরাং সমস্ত মানুষ সমাগম তাঁবুর কাছে এলো| মোশি যেমন আদেশ দিয়েছিল তারা সকলে সেই মত জিনিস আনলো| সমস্ত লোক প্রভুর সামনে দাঁড়াল| 6 মোশি বলল, “প্রভুর আজ্ঞা মতই তোমরা এগুলি করবে আর তখন প্রভুর মহিমা তোমাদের কাছে প্রকাশিত হবে|” 7 তারপর মোশি হারোণকে বলল, “ইস্রায়েলেও প্রভুর আজ্ঞা মতো কাজগুলি করো| বেদীর কাছে ইস্রায়েলেও এবং পাপ মোচনের নৈবেদ্য ও হোমবলির নৈবেদ্যগুলি নিবেদন করো, ইস্রায়েলেতে তুমি এবং তোমার লোকরা শুচি হও| লোকদের নৈবেদ্যগুলিও নাও এবং সেইসব পর্বগুলি পালন কর যেগুলি তাদের শুচি করে|” 8 সেইজন্য হারোণ বেদীর সামনে এসে পাপমোচনের নৈবেদ্যর জন্য ষাঁড়টাকে হত্যা করলো| এই পাপমোচনের নৈবেদ্য তার নিজেরই জন্য| 9 তারপর হারোণের পুত্ররা হারোণের কাছে রক্ত আনলো| হারোণ তার আঙুল রক্তে ডুবিয়ে তার বেদীর কোণগুলোয ছড়িয়ে দিল, তারপর বেদীর মেঝেতে রক্ত ঢেলে দিল| 10 পাপমোচনের নৈবেদ্য থেকে হারোণ নিল চর্বি, বৃক্কগুলো এবং য়কৃতের চর্বি অংশটা, প্রভু যেমন যেমন মোশিকে আজ্ঞা করেছিলেন সেইভাবে সে ঐ জিনিসগুলো বেদীর ওপর পোড়ালো| 11 হারোণ এরপর শিবিরের বাইরে আগুনে মাংস আর চামড়া পোড়াল| 12 পরে হোমবলির জন্য হারোণ জন্তুটিকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে কাটল| হারোণের পুত্ররা হারোণের কাছে রক্ত নিয়ে এলে হারোণ সেই রক্ত বেদীর চারপাশে ছিটিয়ে দিল| 13 হারোণের পুত্ররা হারোণকে হোমবলির টুকরোগুলো আর মাথাটা দিলে সে সেগুলো বেদীর ওপর পোড়াল| 14 হোমবলির ভিতরের অংশগুলো আর পাগুলিও ধুয়ে ফেলে সেইসব বেদীর ওপর পোড়াল| 15 তারপর হারোণ লোকদের নৈবেদ্যগুলি আনল| সে লোকদের পাপের জন্য নৈবেদ্য হিসেবে ছাগলটিকে হত্যা করে প্রথমটার মতই এটিকে নিবেদন করল| 16 প্রভুর নির্দেশমত সে দগ্ধ নৈবেদ্যটিকে নিয়ে এসে নিবেদন করল| 17 বেদীর কাছে শস্য নৈবেদ্য নিয়ে এসে সে এক মুঠো শস্য নিল এবং তা রোজ সকালে বেদীর ওপর যে বলি দেওয়া হত তার সাথে সাথে নিবেদন করল| 18 সে ষাঁড় এবং পুরুষ মেষটিকেও হত্যা করল| এসব হল লোকদের মঙ্গল নৈবেদ্য| হারোণের পুত্ররা হারোণের কাছে রক্ত আনলে সে এই রক্ত বেদীর চারপাশে ছড়িয়ে দিল| 19 তারা ষাঁড় আর মেষের চর্বি, লেজের চর্বি, ভিতরের অংশে ঢাকা দেওয়া চর্বি, বৃক্কগুলি এবং য়কৃতের চর্বি অংশ আনল| 20 এইসব চর্বিগুলো ষাঁড় আর পুরুষ মেষের বুকের ওপর রাখা হলে হারোণ চর্বি অংশগুলো বেদীর ওপর পোড়াল| 21 হারোণ মোশির আজ্ঞামতো বক্ষদেশগুলি এবং ডান উরু প্রভুর সামনে দোলনীয় নৈবেদ্য হিসাবে দোলাল| 22 তারপর লোকদের উদ্দেশ্যে তার হাত ওপরে তুলে তাদের আশীর্বাদ করল| পাপ মোচনের নৈবেদ্য, হোমবলি এবং মঙ্গল নৈবেদ্য শেষ করার পর হারোণ বেদী থেকে নেমে এল| 23 মোশি এবং হারোণ সমাগম তাঁবুর ভিতরে এল| পরে তারা বাইরে এসে লোকদের আশীর্বাদ করল| তারপর প্রভুর মহিমা সমস্ত লোকের সামনে আবির্ভুত হল| 24 প্রভুর কাছ থেকে অগ্নি নির্গত হয়ে বেদীর ওপরকার হোমবলি ও চর্বি দগ্ধ করল| তখন সমস্ত মানুষ সেই নৈবেদ্য দহন দেখে চিত্কার করে উঠলো এবং মাটির দিকে মুখ নীচু করলো|
1 তারপর হারোণের পুত্ররা, নাদব ও অবীহূ ধূপ জ্বালাবার ধূপদানী নিলো| এবং ভিন্ন আগুন ব্যবহার করে সেই সুগন্ধী প্রজ্বলিত করলো| মোশি তাদের যে আগুন ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছিল সেই আগুন তারা ব্যবহার করেনি| 2 তাই প্রভুর কাছ থেকে আগুন নেমে এসে নাদব ও অবীহূকে ধ্বংস করল| প্রভুর সামনেই তারা মৃত্যু বরণ করলো| 3 তখন মোশি হারোণকে বলল, “প্রভু বলেন, ‘যে সমস্ত যাজক আমার নিকটে আসে, তারা অবশ্যই আমাকে শ্রদ্ধা করবে| আমি অবশ্যই তাদের কাছে পবিত্র হিসেবে মান্য হবো এবং সমস্ত মানুষের কাছে অবশ্যই মহিমান্বিত হবো|”‘ তাই তার পুত্রদের মৃত্যু নিয়ে হারোণ নীরব রইল| 4 হারোণের কাকা উষীযেলের দুটি পুত্র ছিল| তারা হল মীশাযেল ও ইলীষাফণ| মোশি সেই দুই পুত্রকে বলল, “পবিত্র স্থানটির সামনে গিযে তোমাদের জ্য়াঠতুতো ভাইদের দেহ শিবিরের বাইরে নিয়ে ইস্রায়েলেও|” 5 তখন মীশাযেল ও ইলীষাফণ মোশিকে মান্য করলো| তারা নাদব ও অবীহূর দেহ শিবিরের বাইরে বয়ে নিয়ে গেলো| নাদব ও অবীহূ তখনও বিশেষ ধরণের সুতোর জামা পরে ছিল| 6 তখন মোশি হারোণের অন্য পুত্র ইলীয়াসর ও ঈথামরকে বলল, “কোনো বিষন্নতা দেখিও না! তোমাদের পোশাক ছিঁড়ো না অথবা মাথার চুল এলোমেলো করো না| বিষন্নতা না দেখালে তোমরা নিহত হবে না| এবং প্রভু বাকী সকলের ওপর ক্রুদ্ধ হবেন না| ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষ তোমাদের আত্মীয়| প্রভু নাদব ও অবীহূকে দগ্ধ করেছেন - এ নিয়ে তারা শোক করতে পারে| 7 কিন্তু তোমরা অবশ্যই সমাগম তাঁবু, এমনকি, তার প্রবেশ পথ ত্যাগ করবে না| ত্যাগ করলে তোমরা মারা ইস্রায়েলেবে| কারণ প্রভুর অভিষেকের তেল তোমাদের ওপর ঢালা হয়েছে|” তখন হারোণ, ইলীয়াসর এবং ঈথামর মোশিকে মান্য করল| 8 তারপর প্রভু হারোণকে বললেন, 9 “যখন তোমরা সমাগম তাঁবুর মধ্যে আসবে তখন তুমি আর তোমার পুত্ররা অবশ্যই দ্রাক্ষারস পান করবে না| যদি তোমরা ঐসব জিনিস পান কর, তাহলে তোমরা মারা ইস্রায়েলেবে| এই বিধি তোমাদের বংশপরম্পরায চিরকালের জন্য চলতে থাকবে| 10 তোমাদের অবশ্যই পবিত্র ও অপবিত্র এবং শুচি ও অশুচি বিষয়ের মধ্যে পরিষ্কারভাবে পার্থক্য় করে নিতে হবে| 11 প্রভু মোশির মাধ্য়মে লোকদের সেইসব বিধি জানিয়ে দিলেন, তুমি লোকদের ঐসব বিধি সম্পর্কে অবশ্যই অবহিত করবে|” 12 হারোণের দুই পুত্র ইলীয়াসর ও ঈথামর তখনও জীবিত ছিল| মোশি হারোণ ও তার দুই পুত্রকে বলল, “আগুনে পোড়ানো উপহারগুলির মধ্যে কিছু শস্য নৈবেদ্য পড়ে আছে| তোমরা শস্য নৈবেদ্য়র সেই অংশ আহার করবে, কিন্তু অবশ্যই তাতে খামির য়োগ করবে না| বেদীর কাছেই সেটা খাও, কারণ সেই নৈবেদ্য অত্যন্ত পবিত্র| 13 নৈবেদ্যর এই অংশ প্রভুর উদ্দেশ্যে আগুনে পোড়ানো হয়েছিল, এবং যে বিধি আমি তোমাদের জানিয়েছি তা শেখায় যে এই অংশ তোমার ও তোমার পুত্রদের জন্যই; কিন্তু অবশ্যই তোমরা একটা পবিত্র স্থানে তা আহার করবে| 14 “তাছাড়া তুমি, তোমার ছেলেরা এবং মেযেরা দোলনীয় নৈবেদ্যসমূহের বক্ষদেশ এবং উরুর অংশ আহার করতে পারবে| এসব তোমাদের পবিত্র জায়গায় খেতে হবে না| কিন্তু তা অবশ্যই পরিচ্ছন্ন জায়গায় খেতে হবে| কারণ সেগুলি আসে মঙ্গল নৈবেদ্যসমূহ থেকে| ইস্রায়েলের লোকরা ঈশ্বরকে যে উপহার দেয় তা থেকে এই অংশ তোমার ও তোমার সন্তানদের প্রাপ্য বলে ধরা হয়েছে| 15 লোকরা অবশ্যই আগুনে পোড়ানো বলির অংশ হিসেবে জন্তুদের চর্বি, মঙ্গল নৈবেদ্যর উরু এবং দোলনীয় নৈবেদ্যর বক্ষদেশ নিয়ে আসবে| প্রভুর সামনে দোলানো হলে নৈবেদ্যর সেই অংশ প্রভুর আজ্ঞা অনুসারে চিরকাল তোমার ও তোমার সন্তানসন্ততিদের অধিকারে ইস্রায়েলেবে|” 16 মোশি পাপার্থক নৈবেদ্য ছাগলের খোঁজ করল, কিন্তু তা ইতিমধ্যে পোড়ানো হয়ে গিযেছিল| এতে মোশি হারোণের পুত্র ইলীয়াসর ও ঈথামরের ওপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হল| মোশি বলল, 17 “সেই ছাগটিকে পবিত্র স্থানে খাওয়া তোমাদের উচিত্ ছিল| এটা অত্যন্ত পবিত্র| কেন তোমরা প্রভুর সামনে তা খেলে না? প্রভু তোমাদের তা দিয়েছিলেন লোকদের দোষের প্রাযশ্চিত্ত করার জন্যে, লোকদের পবিত্র করার জন্য| 18 সেই ছাগলের রক্ত পবিত্র জায়গায় (তাঁবুর মধ্যেকার পবিত্র ঘরে) আনা হয় নি| তাই তোমাদের উচিত্ ছিল আমি যেমন আদেশ দিয়েছিলাম, সেইভাবে পবিত্র জায়গায় মাংস আহার করা|” 19 কিন্তু হারোণ মোশিকে বলল, “দেখুন আজ তারা পাপ মোচনের নৈবেদ্য ও হোমবলির নৈবেদ্য প্রভুর কাছে এনেছিল| আর আপনি জানেন আজ আমার ভাগ্যে কি ঘটেছে| আপনি কি মনে করেন আমি আজ পাপ মোচনের নৈবেদ্য খেলে তা প্রভুকে খুশী করতো? না!” 20 মোশি তা শুনল এবং মেনে নিল|
1 প্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: এই সমস্ত জন্তু তোমরা আহার করতে পারো| 3 যে সব জন্তুর পাযের খুর দুভাগে ভাগ করা, সেইসব জন্তু যদি জাবর কাটে তা হলে তোমরা সেই জন্তুর মাংস খেতে পারো| 4 “কিছু জন্তু আবার জাবর কাটে কিন্তু তাদের পাযের খুর দু’ভাগ করা নয, তোমরা সে সব জন্তু খাবে না| উট, পাহাড়ের শাফন এবং খরগোশ হল সেই রকম| তাই তারা তোমাদের পক্ষে অশুচি| 5 6 7 অন্য কিছু জন্তুদের পাযের খুর দু’ভাগ করা, কিন্তু তারা জাবর কাটে না, ঐসব জন্তু খাবে না| শূকর সেই ধরণের, সুতরাং তারা তোমাদের পক্ষে অশুচি| 8 ঐসব প্রাণীর মাংস খাবে না| এমনকি তাদের মৃত দেহও স্পর্শ করবে না, তা তোমাদের পক্ষে অশুচি| 9 “যদি কোন প্রাণী সমুদ্রে বা নদীতে বাস করে এবং যদি প্রাণীটির পাখনা ও আঁশ থাকে, তাহলে তোমরা সেই প্রাণী খেতে পারো| 10 কিন্তু সমুদ্রে বা নদীতে বাস করে এমন কোন প্রাণীর যদি ডানা ও আঁশ না থাকে তখন সেই প্রাণী তোমরা অবশ্যই খাবে না| এই ধরণের প্রাণী আহারের পক্ষে অনুপযুক্ত| সেই প্রাণীর মাংস তোমরা খাবে না, এমন কি তার মৃত শরীরও স্পর্শ করবে না| 11 12 জলচর যে কোন প্রাণী যার পাখনা এবং আঁশ নেই, তাকে প্রভু আহারের জন্য অনুপযুক্ত বলেছেন বলেই মনে করেন| 13 “ঈশ্বর যে সব পাখী খাওয়ার পক্ষে অনুপযুক্ত বলেছেন, তোমরা অবশ্যই সেইসব পাখীদের অখাদ্য বলে গণ্য করবে| এই পাখীগুলি তোমরা খাবে না: ঈগল, শকুনি, শিকারী পাখী, 14 চিল এবং সব ধরণের বাজ পাখী| 15 সমস্ত জাতের কালো পাখী, 16 উট পাখী, রাতের বাজ পাখী, শঙ্খচিল, সব জাতের শ্যেন পাখী, 17 পেঁচা, লিপ্তপদ সামুদ্রিক পাখী, বড় পেঁচা, 18 হংসী, জলচর প্য়ানিভেলা, শবভূক শকুনি, 19 সারস, সমস্ত জাতের সারস, ঝুঁটিওযালা পাখী এবং বাদুড়| 20 “বুকে হাঁটা ক্ষুদ্র কোন প্রাণীর যদি ডানা থাকে, তাহলে সেগুলিকে তোমরা খাবে না কারণ প্রভু তা নিষেধ করেছেন| ঐ সমস্ত পোকামাকড় খেও না| 21 কিন্তু তোমরা সেইসব পোকামাকড় খেতে পার ইস্রায়েলেরা সন্ধিপদ এবং লাফাতে পারে| 22 সমস্ত রকম পঙ্গপাল, সমস্ত রকমের ডানাওযালা পঙ্গপাল, সমস্ত রকমের ঝিঁঝি পোকা আর সব জাতের গঙ্গা ফড়িং তোমরা খেতে পারো| 23 “কিন্তু অন্য আর সব ক্ষুদ্র প্রাণী ইস্রায়েলেদের ডানা আছে কিন্তু বুকে হেঁটে চলে, তোমরা অবশ্যই সেসব খাবে না, কারণ প্রভু তা নিষিদ্ধ করেছেন| 24 সেই সমস্ত ক্ষুদ্র প্রাণীরা তোমাদের অশুচি করবে| যে তাদের মৃত দেহ স্পর্শ করবে, সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত সে অশুচি থাকবে| 25 যদি কোন ব্যক্তি সেই মৃত পোকামাকড়দের স্পর্শ করে, তাহলে সে অবশ্যই তার কাপড়-চোপড় ধুয়ে ফেলবে| সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত সে অশুচি হয়ে থাকবে| 26 “কিছু প্রাণীর পাযের খুর দুভাগে ভাগ করা কিন্তু খুরগুলি সত্যিকারের দুটি অংশ নয| আবার তারা জাবর কাটে না এসব প্রাণী তোমাদের পক্ষে অশুচি| যে কোন ব্যক্তি তাদের স্পর্শ করলে অশুচি হবে| সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত সেই ব্যক্তিটি অশুচি থাকবে| 27 28 যদি কোন ব্যক্তি তাদের মৃত দেহ সরায, সে অবশ্যই তার পোশাক-আশাক ধুয়ে নেবে| সেই মানুষটি সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| ঐ সমস্ত প্রাণী তোমাদের কাছে অশুচি| 29 “এই সমস্ত বুকে হাঁটা প্রাণীরা তোমাদের কাছে অশুচি: ছুঁচো, ইঁদুর সমস্ত জাতের বড় টিক্টিকি| 30 গোসাপ, কুমির, টিক্টিকি, বালির সরীসৃপ এবং গিরগিটি| 31 ঐ সমস্ত বুকে হাঁটা প্রাণীরা তোমাদের কাছে অশুচি| কোন মানুষ তাদের মৃতদেহ স্পর্শ করলে সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত সে অশুচি থাকবে| 32 “যদি ঐ সমস্ত অশুচি প্রাণীদের কোন একটা মরে কোন কিছুর ওপর পড়ে, তাহলে সেই জিনিসটিও অশুচি হবে| সেই জিনিসটি কাঠের তৈরী কোন পাত্র, কাপড়, চামড়া, শোকের পোশাক দিয়ে তৈরী কাজের কোন হাতিযার হতে পারে| এটা ইস্রায়েলেইহোক তা অবশ্যই জলে ধুতে হবে| সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত তা অশুচি থাকবে| তারপর তা আবার শুচি হবে| 33 যদি ঐ সমস্ত অশুচি প্রাণীদের কোন একটা মারা ইস্রায়েলেয এবং মাটির তৈরী পাত্রের ওপর পড়ে, তাহলে পাত্রের ভেতরের যে কোনো জিনিস অশুচি হয়ে ইস্রায়েলেবে এবং তোমরা অবশ্যই পাত্রটাকে ভেঙ্গে ফেলবে| 34 যদি অশুচি মাটির পাত্রের জল কোন খাদ্যের ওপর পড়ে, তাহলে সেই খাবার অশুচি হবে| অশুচি পাত্রের যে কোন পানীয় অশুচি| 35 যদি মৃত অশুচি প্রাণীর কোন অঙ্গ কোন কিছুর ওপর পড়ে, তাহলে সেই জিনিসটা অশুচি হবে| এটা মাটির উনুন অথবা রুটি সেঁকার মাটির পাত্র হলে তা অবশ্যই ভেঙ্গে টুকরো করে ফেলতে হবে| সেই সমস্ত জিনিস আর শুচি করা ইস্রায়েলেবে না| সেগুলি তোমাদের কাছে সবসমযেই অশুচি| 36 “কোন ঝর্ণা বা জল জমে এমন কোন কূপ শুচি থাকলেও যে মানুষ কোন অশুচি প্রাণীর দেহ স্পর্শ করে সে অশুচি হয়ে ইস্রায়েলেবে| 37 যদি মৃত অশুদ্ধ প্রাণীদের কোনো অংশ বপন করার কোন বীজের ওপর পড়ে, তাহলে সেই বীজ তখনও শুচিই থাকবে| 38 কিন্তু তোমরা যদি বীজের ওপর জল ঢালো এবং তারপর যদি অশুচি প্রাণীদের কোন অঙ্গ ঐসব বীজের ওপর পড়ে তা হলে তোমাদের পক্ষে ঐ সমস্ত বীজ অশুচি| 39 “তাছাড়া তুমি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করো এমন কোন প্রাণী যদি মারা ইস্রায়েলেয, তাহলে যে তার মৃত শরীর স্পর্শ করবে, সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত সে অশুচি রইবে| 40 এবং যে এই প্রাণীদেহ থেকে মাংস খাবে তাকে অবশ্যই তার কাপড় চোপড় ধুতে হবে| সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত এই ব্যক্তিটি অশুচি থেকে ইস্রায়েলেবে| যে ব্যক্তি প্রাণীটির মৃতদেহ তোলে তাকে অবশ্যই তার পোশাক-আশাক ধুতে হবে এবং সেই লোকটি সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 41 “যে সব প্রাণী মাটির ওপর বুকে হেঁটে ইস্রায়েলেয, সেইসব প্রাণীদের তোমরা আহার করবে না| তোমরা সে প্রাণী অবশ্যই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করবে না|” 42 পেটের ওপর ভর দিয়ে হাঁটা অথবা চার পা দিয়ে হাঁটা সরীসৃপ বা যে সমস্ত প্রাণীর অনেকগুলো পা তাদের অবশ্যই আহার করবে না| 43 ঐ সমস্ত প্রাণী তোমাদের যেন নোংরা না করে| তোমরা অশুচি হযো না, 44 কারণ আমিই তোমাদের প্রভু ঈশ্বর! আমি পবিত্র, তাই তোমরাও তোমাদের নিজেদের পবিত্র রেখো| ঐ সমস্ত বুকে হাঁটা প্রাণীদের সংস্পর্শে নিজেদের অশুচি করো না| 45 আমি তোমাদের মিশর থেকে এনেছি ইস্রায়েলেতে তোমরা আমার বিশিষ্ট লোকজন হতে পারো এবং আমি তোমাদের ঈশ্বর হতে পারি| আমি পবিত্র তাই তোমরাও অবশ্যই পবিত্র হবে|” 46 এই সমস্ত নিয়মাবলী পশু, পাখী, সমুদ্রের সমস্ত প্রাণী এবং মাটির ওপর বুকে হাঁটা সমস্ত প্রাণীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য়| 47 ঐ সমস্ত উপদেশ সাধারণ মানুষকে শুচি প্রাণীদের থেকে অশুচি প্রাণীদের আলাদা করতে সাহায়্য় করবে যেন তারা জানতে পারে কোন প্রাণীদের আহার করা এবং কোন প্রাণীদের আহার না করা উচিত্|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: যদি একজন স্ত্রীলোক একটি শিশু পুত্রের জন্ম দেয়, তাহলে সেই স্ত্রীলোকটি সাতদিন ধরে অশুচি থাকবে| তার মাসিকের রক্ত পাতের অশুচি সমযের মতই হবে এই অশুচিতা| 3 অষ্টম দিনে অবশ্যই শিশু পুত্রটিকে সুন্নত করতে হবে| 4 তারপর তার রক্তক্ষয থেকে সে শুচি হবে 33 দিন পর| ইস্রায়েলে কিছু পবিত্র অবশ্যই তার কোনো কিছুই সে স্পর্শ করতে পারবে না| যতক্ষণ না তার শুচিকরণ শেষ হচ্ছে, সে অবশ্যই কোন পবিত্র স্থানে ঢুকতে পাবে না| 5 কিন্তু যদি স্ত্রীলোকটি এক শিশুকন্যার জন্ম দেয়, তাহলে তার মাসিক সমযের রক্তপাতের মতই দু সপ্তাহ ধরে সে অশুচি থাকবে| তার রক্তক্ষয থেকে 66 দিন পর্য়ন্ত কাটিযে সে শুচি হবে| 6 “শুচিকরণের সময় শেষ হলে একটি শিশু কন্যা বা পুত্রের নতুন প্রসূতি, সমাগম তাঁবুতে অবশ্যই বিশেষ ধরণের উত্সর্গ আনবে| সে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে যাজককে অবশ্যই ঐসব উত্সর্গ বস্তুগুলি দেবে| দগ্ধ নৈবেদ্যর জন্য আনতে হবে এক বছর বযসী মেষশাবক এবং একটি ঘুঘু পাখী বা বাচ্চা পাযরা আনবে পাপ মোচনের নৈবেদ্যর জন্য| 7 যদি স্ত্রীলোকটি একটি মেষ দিতে অক্ষম হয় তবে সে দুটি ঘুঘু বা দুটি বাচ্চা পাযরা আনতে পারে| এক পাখী হবে হোমবলির জন্য নির্দিষ্ট আর একটি পাপ মোচনের নৈবেদ্যর জন্য| যাজক ঐ সমস্ত নৈবেদ্য প্রভুর কাছে নিবেদন করে তাকে পাপমুক্ত করবে| এবং সে তার রক্তক্ষযের থেকে শুচি হবে| এগুলি হল একজন নারীর জন্য নির্দিষ্ট নিয়মাবলী, যে নারী একটি শিশু পুত্র বা এক শিশু কন্যার জন্ম দেবে|” 8
1 প্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, 2 “কোন লোকের চামড়া যদি ফুলে থাকে বা তাতে খোস পাঁচড়া অথবা চক্চকে দাগের মতো কিছু থাকে, যদি ক্ষত অংশটা কুষ্ঠ রোগের ঘাযের মতো দেখতে হয়, তাকে অবশ্যই যাজক হারোণ বা তার যাজক পুত্রদের কাছে আনতে হবে| 3 চামড়ার ক্ষত স্থানটিকে যাজক অবশ্যই দেখবে| যদি ক্ষতের মধ্যেকার লোম সাদা হয়ে ওঠে এবং যদি চামড়ার ওপর থেকে ক্ষতস্থানটিকে গর্তের মতো মনে হয়, তবে তা কুষ্ঠরোগ| যাজক লোকটিকে দেখা শেষ করে তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে| 4 “কিন্তু চামড়ায সাদা দাগ যদি গভীর না হয় এবং ক্ষতস্থানের লোম যদি সাদা না হয় তাহলে সাত দিনের জন্যে যাজক সেই মানুষটিকে অন্য সব লোকদের থেকে আলাদা করবে| 5 সাত দিনের দিন যাজক অবশ্যই লোকটাকে দেখবে| যাজক যদি দেখে বোঝে যে ক্ষতস্থানের কোনো পরিবর্তন হয় নি এবং তা চামড়ার ওপর ছড়িয়ে পড়েনি, তাহলে আরও সাত দিনের জন্য লোকটাকে আলাদা করে রাখবে| 6 সাত দিন পর যাজক লোকটিকে আবার দেখবে| যদি ক্ষতস্থানটি শুকিয়ে ইস্রায়েলেয এবং চামড়ার ওপর না ছড়ায, তখন যাজক সেই লোকটিকে শুচি বলে ঘোষণা করবে| এক্ষেত্রে ক্ষতস্থানটি শুধু হল খোস-পাঁচড়ার, সুতরাং লোকটি অবশ্যই তার কাপড়-চোপড় পরিষ্কার করে শুচি হবে| 7 “কিন্তু যদি লোকটি ইস্রায়েলেজকের কাছে নিজেকে শুচি দেখানোর পরে ক্ষতস্থানটি চামড়ায আরও ছড়িয়ে পড়তে দেখে তা হলে লোকটি অবশ্যই ইস্রায়েলেজকের কাছে আবার আসবে| 8 যাজক আবার দেখবে যে ক্ষতস্থানটি চামড়ার ওপর ছড়িয়ে গেছে কিনা, আর তাহলে যাজক তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে| সেটা তাহলে কুষ্ঠরোগ| 9 “যদি কোনো ব্যক্তির কুষ্ঠরোগ থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই ইস্রায়েলেজকের কাছে আনতে হবে| 10 যাজক অবশ্যই লোকটিকে দেখবে যে চামড়ার ওপর কোন সাদা ফোলা অংশ আছে কিনা এবং লোমটাও সাদা হয়ে গেছে কিনা| যদি চামড়ার লোম সাদা হয়ে ইস্রায়েলেয এবং চামড়ার ফোলা জায়গা কাঁচা থাকে, 11 তাহলে তা কুষ্ঠরোগ| দীর্ঘ দিন ধরে ইস্রায়েলে লোকটির চামড়ায থেকে গেছে, যাজক অবশ্যই তাকে অশুচি বলে ঘোষণা করবে| তাকে অন্য লোকদের থেকে অল্প সমযের জন্য আলাদা করার প্রযোজন নেই, কারণ লোকটি অশুচি| 12 “কখনও কখনও মাথা থেকে পা পর্য়ন্ত সারা শরীরে চর্মরোগ ছড়াতে পারে| সুতরাং যাজক অবশ্যই লোকটির সারা শরীর দেখবে| 13 যদি যাজক দেখে যে চর্মরোগ সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে গেছে এবং লোকটার চামড়া সাদা হয়ে গিযেছে, তাহলে যাজক অবশ্যই তাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে| 14 কিন্তু যদি লোকটির চামড়া কাঁচা হয় তাহলে সে শুচি নয| 15 যখন যাজক কোনো মানুষের চামড়া কাঁচা দেখে, সে অবশ্যই লোকটিকে অশুচি ঘোষণা করবে| কাঁচা চামড়া শুচি নয| এটা হল কুষ্ঠরোগ| 16 “যদি কাঁচা চামড়া বদলায এবং সাদা হয়ে ইস্রায়েলেয, তাহলে লোকটিকে ইস্রায়েলেজকের কাছে আসতে হবে| 17 যাজক লোকটিকে অবশ্যই দেখবে| যদি সংক্রামিত জায়গা সাদা হয়, তাহলে যাজক লোকটিকে অবশ্যই শুচি বলে ঘোষণা করবে| ঐ লোকটি শুচি| 18 “কোন ব্যক্তির চামড়ার ওপর ফোড়া হতে পারে এবং সে ফোড়া সেরে যেতে পারে| 19 পরে সেই ফোঁড়ার স্থানে সাদা রঙের ফোলা বা দগ্দগে লাল ডোরা ানা সাদা দাগ হতে পারে| লোকটি ঐ দাগ তখন যাজককে অবশ্যই দেখাবে| 20 যাজক অবশ্যই তা দেখবে| যদি ফোড়াা চামড়া থেকে গর্তের মতো হয় এবং এর ওপরকার লোম সাদা হয়, তাহলে যাজক লোকটিকে অবশ্যই অশুচি ঘোষণা করবে| চিহ্নিত জায়গাটায কুষ্ঠের ঘা শুরু হয়েছে| চামড়ায এই ফোঁড়াটার ভেতর থেকে কুষ্ঠ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে| 21 কিন্তু যদি যাজক জায়গাটায কোন সাদা লোম না দেখে আর জায়গাটা চামড়ার মধ্যে গর্ত না করে থাকে, বরং যদি দেখা ইস্রায়েলেয শুকিয়ে ইস্রায়েলেচ্ছে, তাহলে যাজক লোকটাকে সাত দিনের জন্যে আলাদা করে রাখবে| 22 যদি চামড়ার আরও অংশে দাগ ছড়ায তা হলে যাজক সেই লোকটিকে অবশ্যই অশুচি ঘোষণা করবে| এটা হল ঘা| 23 কিন্তু যদি চক্চকে দাগটি এক জায়গাতেই থাকে এবং না ছড়ায তা হলে বুঝতে হবে তা পুরানো ফোঁড়ারই ক্ষতচিহ্ন| যাজক অবশ্যই তাকে শুচি ঘোষণা করবে| 24 “কোন ব্যক্তির চামড়া আগুনে পুড়ে যেতে পারে| যদি চামড়ার কাঁচা অংশটি সাদা অথবা লাল ডোরাকাটা সাদা অংশ হয়, যাজক অবশ্যই তা দেখবে| যদি সাদা অংশটা চামড়ায গর্তের মতো হয় এবং ঐ জায়গাটার লোম সাদা হয়ে ইস্রায়েলেয তাহলে তা কুষ্ঠরোগ| পোড়া অংশে কুষ্ঠ ছড়িয়ে পড়েছে| যাজক অবশ্যই ঐ লোকটিকে অশুচি ঘোষণা করবে| এটা হল কুষ্ঠরোগ| 25 26 কিন্তু যদি সেই চক্চকে জায়গায় কোনো সাদা লোম না থাকে এবং ক্ষতস্থানটা চামড়ায গর্ত সৃষ্টি না করে মিলিযে ইস্রায়েলেয, তাহলে যাজক অবশ্যই সাত দিনের জন্য লোকটাকে আলাদা করবে| 27 সাত দিনের দিন যাজক লোকটাকে আবার দেখবে| যদি ক্ষতস্থানটা চামড়ার ওপর ছড়িয়ে ইস্রায়েলেয, তাহলে যাজক ঘোষণা করবে যে লোকটা অশুচি| এটা কুষ্ঠরোগ| 28 কিন্তু যদি চক্চকে দাগটি চামড়ায না ছড়ায এবং মিলিযে ইস্রায়েলেয তাহলে পোড়ার জন্যেই ফুলেছে বুঝতে হবে| এটা কেবলমাত্র পোড়ার ক্ষতচিহ্ন| যাজক অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে শুচি বলে ঘোষণা করবে| 29 “কোন ব্যক্তির মাথার চামড়ায বা দাড়িতে ঘা হলে, 30 যাজক চামড়ার এই সংক্রমণ অবশ্যই দেখবে| যদি চামড়া থেকে সংক্রমণের জায়গাটা গর্তের মতো হয় এবং যদি তার চারপাশের লোম হয় পাতলা ও হলদে, তাহলে যাজক সেই মানুষটিকে অবশ্যই অশুচি ঘোষণা করবে| এটা দাদ, খারাপ চর্মরোগ| 31 যদি রোগটা চামড়ার থেকে গর্ত হওয়ার মতো মনে না হয়, কিন্তু সেখানে কোনো কালো লোম না থাকে, তখন যাজক অবশ্যই লোকটিকে সাত দিনের জন্যে আলাদা করে দেবে| 32 সাতদিনের মাথায় যাজক সংক্রামিত জায়গাটা দেখবে| যদি রোগটা না ছড়ায এবং সেখানে কোন হলদে লোম না জন্মায় এবং রোগটা চামড়া থেকে গর্তের মতো না হয়, 33 তাহলে লোকটা নিশ্চয়ই নিজেকে কামিযে নেবে; কিন্তু সে রোগের জায়গাটা কখনও কামাবে না| যাজক অবশ্যই লোকটিকে আরও সাত দিন আলাদা করে রাখবে| 34 সাত দিনের মাথায় যাজক অবশ্যই রোগটাকে দেখবে| যদি গোটা চামড়ায রোগটা না ছড়ায এবং যদি চামড়া থেকে সেটাকে গর্তের মত মনে না হয়, তাহলে যাজক লোকটিকে শুচি বলে ঘোষণা করবে| লোকটি অবশ্যই তার কাপড়-চোপড় ধৌত করবে এবং শুচি হবে| 35 কিন্তু শুচি হওয়ার পর লোকটির রোগ যদি চামড়ায ছড়ায, 36 তখন যাজক লোকটিকে আবার দেখবে| যদি রোগটা চামড়ায ছড়িয়ে ইস্রায়েলেয যাজক হলুদ রঙের লোম দেখার প্রযোজন বোধ করবে না| লোকটা অশুচি| 37 কিন্তু যদি যাজক মনে করে যে রোগটা সেরে গেছে এবং তার মধ্যে কালো লোম গজাতে শুরু করেছে, তাহলে রোগটা সেরে গেছে| লোকটা শুচি| যাজক অবশ্যই ঘোষণা করবে যে লোকটা শুচি| 38 “যদি কোন লোমের চামড়ায সাদা সাদা দাগ থাকে, 39 তাহলে যাজক অবশ্যই ঐ সব দাগের জায়গাগুলো দেখবে| যদি লোকটার চামড়ায ওপরকার দাগগুলো কেবলমাত্র অনুজ্জ্বল সাদাটে হয় তাহলে তা শুধুমাত্র ফুসকুড়ি বা ক্ষতিকারক নয| ঐ ধরণের লোক শুচি| 40 “কোন মানুষের মাথার চুল পড়ে যেতে পারে; সে শুচি, এটা শুধু টাক পড়া| 41 কোন মানুষের মাথার দুপাশ থেকে চুল উঠে যেতে পারে; সে শুচি| এটা শুধুমাত্র আর এক ধরণের টাক পড়া| 42 কিন্তু যদি তার মাথার টাক পড়া চামড়ায কোন লাল এবং সাদা দাগ থাকে, তাহলে তা চামড়ারই কোন রোগ বুঝতে হবে| 43 একজন যাজক অবশ্যই তাকে দেখবে| যদি সংক্রামিত ফোঁড়াটা লাল এবং সাদা হয়, আর যদি শরীরের অন্য সব অংশে কুষ্ঠ রোগের মতো দেখায় 44 তাহলে বুঝতে হবে লোকটির মাথার খুলিতে কুষ্ঠ হয়েছে, লোকটা অশুচি| যাজক অবশ্যই লোকটিকে অশুচি ঘোষণা করবে| 45 “যদি এক ব্যক্তির কুষ্ঠ রোগ থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তি অন্য লোকদের সাবধান করে দেবে| সেই লোকটি চেঁচিয়ে বলবে, “অশুচি, অশুচি|” লোকটির কাপড়ের দুই ধারের জোড়া অবশ্যই ছিঁড়ে ফেলা হবে| সে তার চুল অবিন্যস্ত করবে এবং মুখ ঢাকবে| 46 যতক্ষণ তার সংক্রামক ব্যাধি থাকবে ততক্ষণ লোকটি হবে অশুচি| সে অবশ্যই একা থাকবে| তার বাড়ী অবশ্যই শিবিরের বাইরে থাকবে| 47 “কিছু পোশাকের ওপর ছাতা পড়তে পারে| কাপড়টা মসীনা সুতোর অথবা উলে তৈরী, তাঁতে বোনা বা হাতে বোনা হতে পারে| এক টুকরো চামড়ার ওপর বা চামড়া থেকে তৈরী কোন জিনিসের ওপরেও ছাতা পড়তে পারে| 48 49 যদি ঐ ছত্রাকের রঙ সবুজ বা লাল হয় তাহলে এটা অবশ্যই একজন যাজককে দেখাতে হবে| 50 যাজক অবশ্যই ছাতা পড়া অংশটা দেখবে এবং সেই জিনিসটাকে আলাদা জায়গায় সাতদিন ধরে ফেলে রাখবে| 51 সাত দিনের মাথায় যাজক অবশ্যই ছাতা পড়া অংশটি দেখবে| ছাতা পড়া অংশটা চামড়ার বা কাপড়ের ওপর হোক তাতে তেমন কিছু ইস্রায়েলেয আসে না| যদি পোশাক তাঁতে বোনা বা হাতে বোনা হয় তাতেও কিছু ইস্রায়েলেয আসে না, চামড়া কিসে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটাও কোন ব্যাপার নয| যদি ছাতা পড়া অংশটা ছড়ায তাহলে সেই কাপড় বা চামড়া অশুচি| সংক্রামনটি অশুচি| যাজক অবশ্যই সেই কাপড় ও চামড়া পুড়িয়ে ফেলবে| 52 53 “যদি যাজক দেখে যে ছাতা পড়া অংশটি ছড়িয়ে পড়েনি, তখন কাপড় বা চামড়া অবশ্যই ধুতে হবে| চামড়া বা কাপড় ইস্রায়েলেই হোক না কেন, কোন ব্যাপার নয| অথবা যদি কাপড় হাতে বোনা বা তাঁতে বোনা হয় তাতেও কিছু আসে ইস্রায়েলেয না| 54 যাজক লোকেদের অবশ্যই আদেশ দেবে সেই চামড়া বা কাপড়ের টুকরো ধুয়ে ফেলতে| তারপর যাজক আরো সাত দিনের জন্য কাপড় চোপড় আলাদা করে রাখবে| 55 এরপর যাজক অবশ্যই আবার দেখবে| যদি সেই অংশটি তখনও ছত্রাক দ্বারা সংক্রামিত হয়ে আছে বলে মনে হয়, তখন ছড়িয়ে না থাকা সত্ত্বেও তা অশুচি হবে এবং সোকে আগুনে পোড়াতে হবে| 56 “কিন্তু যদি ছাতা পড়া অংশটি ম্লান হয়ে গিযে থাকে তাহলে যাজক অবশ্যই চামড়া বা কাপড়ের টুকরো থেকে সংক্রামিত অংশটি ছিঁড়ে বাদ দেবে| তাঁতে বা হাতে বোনা কাপড় হলেও কিছু আসে ইস্রায়েলেয না| 57 কিন্তু সেই চামড়ার বা কাপড়ের টুকরোয ছাতা পড়া অংশ আবার দেখা দিতে পারে| যদি তাই ঘটে তখন বুঝতে হবে ছাতা পড়া অংশটা ছড়িয়ে পড়ছে| সেক্ষেত্রে তোমাকে সেই ছাতা পড়া জিনিস পুড়িয়ে ফেলতে হবে| 58 কিন্তু ধোযার পরে যদি ছাতা পড়া অংশ না দেখা দেয় তাহলে সেই চামড়ার বা কাপড়ের টুকরো শুচি| সে কাপড় তাঁতে বোনাই হোক অথবা হাতে বোনা সেটা কোন ব্যাপারই নয| সেই কাপড় শুচি|” 59 ঐগুলি হল চামড়ার বা কাপড়ের টুকরোগুলির ওপরে ছাতা পড়ার ব্যাপারে নিয়মাবলী| কাপড় তাঁতে বা হাতে বোনা হতে পারে; কিন্তু তাতে কিছু আসে ইস্রায়েলেয না|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “এখন যে নিয়মাবলী বলব সেগুলো আগে চর্মরোগ ছিল কিন্তু সুস্থ হয়েছে, এমন ব্যক্তিকে শুচি করার নিয়মাবলী|“যে মানুষটির কুষ্ঠ ছিল তাকে একজন যাজক অবশ্যই দেখবে| 3 যাজক অবশ্যই শিবিরের বাইরে গিযে সেই ব্যক্তির চর্মরোগ সেরে গেছে কিনা তা দেখবে| 4 লোকটি সুস্থ হয়ে থাকলে যাজক তাকে দুটি জীবন্ত শুচি পাখী, এক খণ্ড এরস বৃক্ষের কাঠ, এক টুকরো লাল কাপড় এবং একটি এসোব গাছ আনতে আদেশ করবে| 5 তারপর যাজক অবশ্যই আদেশ দেবে মাটির পাত্রে জলের ঢেউযে একটি পাখীকে হত্যা করার জন্য| 6 এবার অন্য যে পাখীটি বেঁচে আছে যাজক সেটার সাথে এরস বৃক্ষের কাঠের খণ্ড, লাল কাপড়ের টুকরো এবং এসোব গাছ নেবে| এরপর জলের ঢেউযে যে পাখীটিকে মারা হয়েছে, তার রক্তের মধ্যে সে জীবন্ত পাখীটাকে এবং অন্য জিনিসগুলোকে ডোবাবে| 7 যে মানুষটির কুষ্ঠ রোগ হয়েছিল তার গায়ে সাতবার রক্তটা ছিটিয়ে দেবে| তারপর যাজক লোকটাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে এবং পরে খোলা মাঠে গিযে পাখীটাকে ছেড়ে দেবে| 8 “তারপর লোকটি তার পোশাক পরিচ্ছদ ধুয়ে ফেলবে, তার মাথার সমস্ত চুল কামিযে ফেলবে এবং স্নান করে শুচি হবে| লোকটি এবার শিবিরের মধ্যে যেতে পারবে; কিন্তু সে অবশ্যই সাতদিন তার তাঁবুর বাইরে কাটাবে| 9 সাতদিনের দিন সে তার মাথা, দাড়ি এবং ভুরু অর্থাত্ তার সমস্ত চুল কামাবে| তারপর সে তার কাপড়-চোপড় ধোবে এবং জলে স্নান করে শুচি হবে| 10 “অষ্টম দিনে, যে লোকটার চর্ম রোগ ছিল সে নিখুঁত দুটি মেষশাবক এবং একটি এক বছর বযসী স্ত্রী মেষশাবকও আনবে| সে অবশ্যই শস্য নৈবেদ্যর জন্য 24 কাপ তেল মেশানো গুঁড়ো ময়দা আনবে| এছাড়াও লোকটি যেন এক লোগ অলিভ তেল নিয়ে আসে| 11 শুচিকারী যাজক অবশ্যই যে লোকটি শুচি হচ্ছে তাকে এবং তার নৈবেদ্যগুলি সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে প্রভুর সামনে আনবে| 12 যাজক পুরুষ মেষশাবকগুলির মধ্যে একটিকে দোষার্থক নৈবেদ্যরূপে উপহার দেবে| তারপর সেই মেষটি ও এক লোগ তেল দোলনীয় নৈবেদ্য হিসাবে প্রভুর সামনে দোলাবে| 13 তারপর যে পবিত্র স্থানে তারা পাপ মোচনের নৈবেদ্য ও হোমবলির নৈবেদ্য বলি দেয়, সেই স্থানেই যাজক পুরুষ মেষশাবকটিকে বলি দেবে| দোষ মোচনের নৈবেদ্য হল পাপ মোচনের নৈবেদ্যর মতো| এটা ইস্রায়েলেজকের কাছে থাকবে| এটা অত্যন্ত পবিত্র| 14 “দোষ মোচনের নৈবেদ্যর রক্ত নিয়ে যাজক এই রক্তের কিছুটা রক্ত যে লোকটিকে শুচি করা হচ্ছে তার ডান কানের লতিতে, কিছুটা রক্ত তার ডান হাতের বুড়ো আঙুলে এবং কিছুা রক্ত সেই লোকের ডান পাযের বুড়ো আঙুলে লাগিয়ে দেবে| 15 যাজক সেই এক লোগ তেলের কিছুটা নিয়ে তা বাঁ হাতের তালুতে ঢালবে| 16 তারপর যাজক ডান হাতের আঙুল বাঁ হাতে রাখা তেলের মধ্যে ডুবিয়ে প্রভুর সামনে সাতবার তেলের কিছুটা ছিটিয়ে দেবে| 17 আর হাতের তালুর কিছুটা তেল যে মানুষটিকে শুচি করা হচ্ছে তার ওপর ঢেলে দেবে| দোষ মোচনের নৈবেদ্যর রক্ত যেখানে যেখানে লাগানো হয়েছিল, সেই একই জায়গাতেই যাজক তেল লাগিয়ে দেবে অর্থাত্ লোকটির ডান কানের লতিতে, ডান হাতের বুড়ো আঙুলে এবং কিছুটা তেল লোকটির ডান পাযের বুড়ো আঙুলে দেবে| 18 লোকটিকে শুচি করার জন্য যাজক হাতের তালুতে পড়ে থাকা বাকি তেলটুকু লোকটির মাথায় দেবে| এইভাবে যাজক প্রভুর সামনে লোকটিকে পবিত্র করবে| 19 “তারপর যাজক লোকটিকে শুচি করার জন্য প্রাযশ্চিত্ত হিসাবে পাপ মোচনের নৈবেদ্যটিকে উত্সর্গ করবে| এরপর হোমবলির নৈবেদ্যর জন্য যাজক প্রাণীটিকে হত্যা করবে| 20 তারপর যাজক বেদীর ওপর হোমবলির নৈবেদ্য এবং শস্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে| এইভাবে যাজক ঐ লোকটির জন্য প্রাযশ্চিত্ত করলে লোকটি শুচি হবে| 21 “কিন্তু যদি লোকটি গরীব হয় এবং ঐ সমস্ত নৈবেদ্য দানে অক্ষম হয় তাহলে সে দোষার্থক নৈবেদ্যর জন্য একটি পুরুষ মেষশাবক আনবে| এটা হবে দোলনীয় নৈবেদ্য ইস্রায়েলেতে যাজক সেই লোকটিকে পবিত্র করতে পারে| এছাড়া শস্য নৈবেদ্যর জন্য তেল মেশানো 8 কাপ গুঁড়ো ময়দা ও এক লোগ অলিভ তেল লোককিে আনতে হবে| 22 এবং সঙ্গতি অনুসারে আনবে দুটো ঘুঘু বা দুটি বাচ্চা পাযরা; যার একটি হবে পাপ মোচনের নৈবেদ্য এবং অন্যটি হবে হোমবলির নৈবেদ্য| 23 “আট দিনের দিন লোকটি শুচি হবার জন্য সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে প্রভুর সামনে ইস্রায়েলেজকের কাছে ঐ জিনিসগুলি আনবে| 24 দোষার্থক নৈবেদ্যর মেষশাবক এবং তেল নিয়ে যাজক তা প্রভুর সামনে দোলনীয় নৈবেদ্য হিসেবে উত্সর্গ করবে| 25 তারপর লোকটিকে শুচি করার জন্য দোষার্থক নৈবেদ্যর মেষশাবকটিকে হত্যা করে যাজক এই রক্তের কিছুটা লোকটির ডান কানের লতিতে দেবে, কিছুটা তার ডান হাতের বুড়ো আঙূলে এবং কিছুটা রক্ত তার ডান পাযের বুড়ো আঙুলে লেপে দেবে| 26 যাজক সেই তেলের কিছুটা তার বাঁ হাতের তালুতে ঢালবে| 27 তার বাঁ হাতে যে তেল রযেছে, তার ওপর যাজক তার ডান হাতের আঙুল দিয়ে প্রভুর সামনে সাতবার এই তেল ছিটিয়ে দেবে| 28 তারপর যাজক তার হাতের কিছুটা তেল পাপমোচনের বলির রক্ত যেখানে লাগিয়েছিল সেইসব জায়গায় লাগিয়ে দেবে অর্থাত্ যে মানুষটি শুচি হচ্ছে তার ডান কানের লতিতে, ডান হাতের বুড়ো আঙুলে এবং ডান পাযের বুড়ো আঙুলে দেবে| বাকি তেলের কিছুটা লোকটির মাথায় দেবে| 29 এইভাবে যাজক প্রভুর সামনে লোকটিকে পবিত্র করবে| 30 “তারপর যাজক নৈবেদ্য হিসাবে দেওয়া ঘুঘুগুলোর একটি বা বাচ্চা পাযরাগুলোর একটি উত্সর্গ করবে| (সে অবশ্যই ব্যক্তির সঙ্গতি অনুসারে উত্সর্গ করবে|) 31 অর্থাত্ সঙ্গতি অনুসারে সে শস্য নৈবেদ্যর সাথে পাখিগুলোর মধ্যে একটাকে উত্সর্গ করবে পাপমোচনের বলি হিসেবে, আর একটিকে উত্সর্গ করবে হোমবলির নৈবেদ্য হিসেবে.| এইভাবে প্রভুর সামনে যাজক লোকটিকে শুচি করার জন্য প্রাযশ্চিত্ত করবে|” 32 শুদ্ধ হওয়ার জন্য যে সমস্ত মানুষ নিয়মিত নৈবেদ্য সম্প্রদানে অপারগ, চর্মরোগ থেকে সেরে ওঠার পর শুচি হবার জন্য ঐ নিয়মাবলী তাদের জন্যই নির্দিষ্ট| 33 প্রভু মোশি এবং হারোণকে আরও বললেন, 34 “আমি তোমাদের অধিকার করার জন্য যে কনান দেশ দিয়ে দিয়েছি সেই দেশে তোমরা প্রবেশ করলে আমি কোন লোকের বাড়ীতে ছত্রাক উত্পন্ন করতে পারি| 35 এরকম হলে সেই বাড়ীটির মালিক অবশ্যই ইস্রায়েলেজকের কাছে আসবে এবং বলবে, “আমার বাড়ীতে আমি ছত্রাকের মত কিছু দেখছি|” 36 “যাজক বাড়ীতে ঢুকে ছত্রাক পরীক্ষা করার আগে বাড়ী থেকে সবকিছু বাইরে বের করার জন্য আদেশ দেবে| যাজক ছত্রাক দেখতে ইস্রায়েলেওযার আগে লোকরা একাজ করলে ঘরের সমস্ত কিছু অশুচি হবে না| এরপর যাজক ভাল করে পরীক্ষা করার জন্য বাড়ীর মধ্যে ঢুকবে| 37 যাজক পরীক্ষা করে যদি দেখে যে বাড়ির দেওয়ালগুলির ওপরকার ছত্রাক সবুজ অথবা লাল রঙের এবং তা দেওয়ালের গায়ে গর্ত করেছে, 38 তাহলে যাজক অবশ্যই বাড়ীর বাইরে আসবে এবং সাত দিনের জন্য বাড়ীটিতে তালা লাগাবে| 39 “সপ্তম দিনে যাজক ফিরে এসে বাড়ীটিকে পরীক্ষা করবে| যদি বাড়ীর দেওয়ালগুলিতে ছত্রাক ছড়িয়ে পড়ে, 40 তাহলে যাজক ছত্রাক জড়ানো পাথরের টুকরোগুলোকে টেনে বের করার এবং লোকদের সেগুলিকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার আদেশ দেবে| শহরের বাইরের কোন বিশেষ ধরণের অশুচি জায়গায় তারা অবশ্যই ঐ সব পাথরগুলো রাখবে| 41 তারপর যাজক গোটা বাড়ীটির ভেতরটা চ্ছেে ফেলার আদেশ দেবে| লোকরা চ্ছেে তোলা প্রলেপ শহরের বাইরের কোন অশুচি জায়গায় জমা করবে| 42 তারপর সেই লোকটি দেওয়ালগুলোর ওপর নতুন পাথর বসাবে এবং নতুন প্রলেপ দিয়ে দেওয়ালগুলো ঢেকে দেবে| 43 “যদি পুরানো প্রলেপ চ্ছেে ফেলে নতুন পাথর ও প্রলেপ লাগানোর পর ঐ বাড়ীটিতে আবার ছত্রাক দেখা দেয়, 44 তখন যাজক আবার আসবে এবং বাড়ীটিকে পরীক্ষা করবে| যদি সংক্রামণ বাড়ির মধ্যে ছড়িয়ে ইস্রায়েলেয, তাহলে এটা একটা রোগ ইস্রায়েলে তাড়াতাড়ি অন্য জায়গায় ছড়িয়ে ইস্রায়েলেয| সুতরাং বাড়ীটি অশুচি| 45 সেই ব্যক্তি অবশ্যই বাড়ীটিকে ভেঙ্গে ফেলবে| শহরের বাইরে নির্দিষ্ট অশুচি জায়গায় পাথরগুলি, প্রলেপ ও কাঠের টুকরোগুলি নিয়ে গিযে ফেলবে| 46 বাড়ীটি যখন তালাবন্ধ, সেই সময় যদি কোনো ব্যক্তি ঐ বাড়ীর মধ্যে ইস্রায়েলেয, তবে সে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 47 যদি কোনো ব্যক্তি সেই বাড়ীর মধ্যে খাওয়া-দাওয়া করে অথবা সেখানে শোয, তাহলে সেই ব্যক্তি অবশ্যই তার কাপড়-চোপড় ধোবে| 48 “বাড়ীতে নতুন পাথর এবং প্রলেপ লাগানোর পর যাজক অবশ্যই বাড়ীটিকে পরীক্ষা করবে| যদি ছত্রাক বাড়ীটায ছড়িয়ে না পড়ে, তাহলে যাজক ঘোষণা করবে যে বাড়ীটি শুচি| কারণ ছত্রাক মরে গেছে| 49 “তখন বাড়ীটিকে শুচি করার জন্য যাজক অবশ্যই দুটি পাখি, এক খণ্ড এরস কাঠ, এক টুকরো লাল কাপড় এবং একটি এসোব গাছ নেবে| 50 মাটির বড় পাত্রে জলের স্রোতের মধ্যে যাজক একটি পাখীকে হত্যা করবে| 51 তারপর যাজক এরস কাঠ, এসোব গাছ, লাল কাপড়ের খণ্ড ও জীবন্ত পাখীটিকে নেবে এবং জলের স্রোতে হত্যা করা পাখীর রক্তে যাজক ঐসব জিনিস ডোবাবে| এরপর যাজক সাতবার সেই রক্ত বাড়ীটির ওপর ছিযিে দেবে| 52 যাজক ঐ সব জিনিস ব্যবহার করে বাড়ীটিকে এইভাবে শুচি করবে| 53 যাজক শহরের বাইরে একটি ফাঁকা জায়গায় ইস্রায়েলেবে এবং জীবন্ত পাখীটিকে ছেড়ে দেবে| এইভাবে যাজক বাড়ীটির জন্য প্রাযশ্চিত্ত করবে এবং বাড়ীটি শুচি হবে|” 54 এ সমস্তই হল যে কোন সংক্রামক কুষ্ঠ রোগের 55 কাপড়-চোপড় অথবা বাড়ীর মধ্যেকার অংশে লাগা ছত্রাকের নিয়মাবলী| 56 এগুলো চামড়ার ওপরকার ফোঁড়া, খোস-পাঁচড়া বা দগ্দগে দাগের নিয়মকানুন| 57 এই সমস্ত নিয়ম ব্যাখ্য়া করে কোন্ জিনিসগুলি শুচি এবং কোন্ জিনিসগুলি অশুচি| এগুলি ঐসব রোগের নিয়মাবলী|
1 প্রভু মোশি আর হারোণকে আরও বললেন: 2 “ইস্রায়েলের লোকদের এটা বলো, যখন কোন পুরুষ তার শরীর থেকে তরল পদার্থ নির্গত করে তখন সেই ব্যক্তি অশুচি| 3 তার শরীর থেকে সেটা সাবলীলভাবে বেরিয়ে আসুক বা প্রবাহ বন্ধ হোক্ তাতে কিছু আসে ইস্রায়েলেয না| 4 “নির্গমণ হয়েছে এমন ব্যক্তি যদি কোন বিছানায শোয তবে তা অশুচি হয়ে পড়বে আর সে ইস্রায়েলে কিছুর ওপর বসবে তাও অশুচি হয়ে পড়ে| 5 যদি কোন ব্যক্তি, যার নির্গমণ হয়েছে তার বিছানা স্পর্শ করে, তাহলে সে অবশ্যই তার জামাকাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে, তবে সে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 6 যদি কোন ব্যক্তি যার নির্গমণ হয়েছে তার জায়গায় বসে, তাহলে সে অবশ্যই তার জামাকাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে| সেও সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 7 আরও যদি কোন ব্যক্তি নির্গমণ হয়েছে এমন কাউকে ছুঁযে ফেলে, তাহলে সে অবশ্যই তার জামা কাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে আর সে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 8 “যার নির্গমণ হয়েছে সে যদি কোনো শুচি ব্যক্তির ওপর থুতু ফেলে তাহলে শুচি ব্যক্তিটি অবশ্যই তার জামা কাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে| এই ব্যক্তিটি সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 9 যার নির্গমণ হয়েছে সেই ব্যক্তি যদি কোন জিনের ওপর বসে তাহলে সেটিও অশুচি হবে| 10 সুতরাং যদি কেউ নির্গমণ হয়েছে এমন কোন ব্যক্তির নীচে থাকা কোন কিছু স্পর্শ করে বা এই জিনিসগুলি বহন করে, তাহলে সে অবশ্যই তার জামাকাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে| সে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 11 “যদি এমন হয়, যে কোন ব্যক্তি, যার নির্গমণ হয়েছে সে তার হাত ধোযনি কিন্তু অন্য একজনকে স্পর্শ করেছে, তাহলে সেই অপর ব্যক্তি অবশ্যই তার জামাকাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে| সে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 12 “নির্গমণ হয়েছে এমন কোন ব্যক্তি যদি মাটির গামলা ছোঁয, তাহলে সেই গামলাটি অবশ্যই ভাঙতে হবে| আর সে কোন কাঠের গামলা ছুঁযে ফেললে সেই গামলা অবশ্যই জল দিয়ে ধুতে হবে| 13 “যখন নির্গমণ হয়েছে এমন ব্যক্তি সেরে ওঠে, তখন তাকে শুদ্ধিকরণ সম্পূর্ণ হবার জন্য সাত দিন অপেক্ষা করতে হবে| তারপর সে তার জামা কাপড় ধোবে এবং স্রোতের জলে শরীরকে স্নান করাবে| তা হলে সে শুচি হবে| 14 আট দিনের দিন সেই ব্যক্তিটি তার নিজের জন্য দুটি ঘুঘু বা দুটি বাচ্চা পাযরা আনবে| সমাগম তাঁবুর ঢোকার মুখে প্রভুর সামনে এনে সে সেই পাখী দুটি যাজককে দেবে| 15 যাজক পাখীগুলির একটিকে পাপ মোচনের নৈবেদ্য হিসেবে এবং আর একটিকে হোমবলির নৈবেদ্য হিসেবে উত্সর্গ করবে| এইভাবে যাজক প্রভুর সামনে লোকটিকে পবিত্র করবে| 16 “যদি কোন পুরুষ মানুষের বীর্য়পাত ঘটে, সে তার সারা শরীর স্নানের জলে ধোবে, কিন্তু সন্ধ্যা পর্য়ন্ত সে অশুচি থাকবে| 17 যদি কাপড় বা কান চামড়ার ওপর বীর্য় পড়ে থাকে, তা হলে সে কাপড় বা চামড়া অবশ্যই জল দিয়ে ধুয়ে ফেলবে| এটা সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 18 যদি কোন পুরুষ কোন মহিলার সঙ্গে এক বিছানায শোয এবং বীর্য়পাত ঘায, তাহলে পুরুষ ও মহিলা দুজনেই জলে স্নান করবে| তারা সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 19 “মাসিক রক্তপাতের সময় কোন স্ত্রীলোক সাত দিন অশুচি থাকবে| যদি কোন ব্যক্তি তাকে স্পর্শ করে, সন্ধ্যা পর্য়ন্ত সেই ব্যক্তি অশুচি থাকবে| 20 মাসিক রক্তপাতের সময় সেই স্ত্রীলোক ইস্রায়েলে কিছুর ওপর শোবে, প্রত্যেকটি হবে অশুচি এবং সে ইস্রায়েলে কিছুর ওপর বসবে সেটাও হবে অশুচি| 21 যদি কোন ব্যক্তি স্ত্রীলোকটির বিছানা ছোঁয, সেই ব্যক্তি অবশ্যই তার জামা কাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে| সেও সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 22 মহিলাটি ইস্রায়েলে কিছুর ওপর বসেছে, সেগুলি যদি কোন লোক ছোঁয, সেই লোকটি অবশ্যই জামা কাপড় ধোবে ও জলে স্নান করবে কিন্তু সে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 23 লোকটি স্ত্রীলোকের বিছানা ছুঁলে বা স্ত্রীলোকটি ইস্রায়েলেতে বসেছে তার কোন কিছু স্পর্শ করলে, সেই লোকটি সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 24 “যদি কোন ব্যক্তি কোন মহিলার সাথে মাসিক রক্তপাতের মধ্যেই য়ৌন সম্পর্ক করে, তাহলে স্ত্রীলোকটির অশুচিতা তার মধ্যে প্রবেশ করবে এবং লোকটি সাত দিন ধরে অশুচি থাকবে| লোকটি শুয়েছে এমন প্রত্যেকটি বিছানা অশুচি হবে| 25 “যদি কোন মহিলার অনেক দিন ধরে রক্তক্ষরণ হয়, এটি যদি তার মাসিক রক্তস্রাবের সমযে না হয়, অথবা যদি তার মাসিক রক্তপাতের পরে রক্তক্ষরণ হয়, তাহলে সে মাসিক রক্তস্রাবের মতই অশুচি হবে| যতদিন তার রক্তস্রাব থাকবে, ততদিন সে অশুচি থাকবে| 26 যে কোন রক্তস্রাবের সময় যে কোন বিছানায মহিলাটি শোবে, তা হবে তার মাসিক রক্তস্রাবের সময়কার বিছানায মতই| ইস্রায়েলে কিছুর ওপর মেযেটি বসবে তা অশুচি হবে; ঠিক যেমন তার মাসিক রক্তস্রাবের সময় সে অশুচি হয় সেরকমই| 27 যদি কোন ব্যক্তি সেইসব জিনিস ছোঁয, সেই ব্যক্তি হবে অশুচি| লোকটি তার পোশাক-পরিচ্ছদ ধোবে এবং জলে স্নান করবে, কিন্তু সন্ধ্যা পর্য়ন্ত সে অশুচি থাকবে| 28 স্ত্রীলোকটি রক্তস্রাব বন্ধ হওয়ার পর অবশ্যই সাত দিন অপেক্ষা করবে; তারপর সে শুচি হবে| 29 আট দিনের দিন স্ত্রীলোকটি দুটি ঘুঘু অথবা দুটি বাচ্চা পাযরা আনবে| সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে ইস্রায়েলেজকের কাছে সেগুলি আনবে| 30 তখন যাজক একটা পাখীকে পাপ মোচনের নৈবেদ্য হিসেবে এবং অন্যটিকে হোমবলির নৈবেদ্য হিসেবে উপহার দেবে| এইভাবে যাজক প্রভুর সামনে তাকে শুচি করবে| 31 “সুতরাং অশুচি হওয়া বিষয়ে অবশ্যই তোমরা ইস্রায়েলের লোকদের সাবধান করবে| তাহলে তারা আমার পবিত্র তাঁবুকে অশুচি করে তাদের অশুচিতায মারা পড়বে না| 32 এই সমস্ত নিয়ম ইস্রায়েলেদের নির্গমণ হয়েছে এমন লোকদের জন্য| ঐ সব নিয়ম হল দীর্ঘ পতনের ফলে অশুদ্ধ মানুষদের জন্য| 33 এবং ঐগুলি হল যে সমস্ত স্ত্রীলোক তাদের মাসিক রক্তস্রাবের সময় অশুচি হয় তাদের জন্য| উপরন্তু ঐ সমস্ত নিয়মাবলী সেই ব্যক্তির জন্য যে অপর এক অশুচি স্ত্রীর সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করে|
1 হারোণের দুই পুত্র প্রভুর কাছে উপস্থিত হয়ে মারা ইস্রায়েলেবার পর প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “তোমার ভাই হারোণের সঙ্গে কথা বলো, তাকে বলো যে সে তার ইচ্ছা মত যে কোন সমযে পর্দার পিছনে পবিত্রতম জায়গায় যেতে পারে না| চুক্তির পবিত্র সিন্দুকটি ঐ পর্দার পিছনের ঘরে আছে| ঐ পবিত্র সিন্দুকটির মাথায় আছে বিশেষ ধরণের আচ্ছাদন| আমি ঐ বিশেষ আচ্ছাদনের ওপর মেঘের মধ্যে আবির্ভূত হই| যদি হারোণ ঐ ঘরে ঢোকে সে মারা যেতে পারে| 3 “পাপের প্রাযশ্চিত্তের দিন হারোণ অবশ্যই পাপমোচনের নৈবেদ্যর জন্য একটি ষাঁড় এবং হোমবলির জন্য একটি পুরুষ মেষ উত্সর্গ করবে| পবিত্রতম জায়গায় প্রবেশ করার আগেই হারোণ এটা করবে| 4 হারোণ অবশ্যই তার দেহ জলে ধৌত করবে| তারপর সে এই সমস্ত পোশাক পরবে; হারোণকে অতি অবশ্যই পবিত্র লিনেন জামা পরতে হবে| লিনেনের অন্তর্বাসসমূহ তার দেহে থাকবে| সে তার চারপাশে লিনেনের বেল্ট ব্যবহার করবে এবং লিনেনের পাগড়ী পরবে| ঐগুলি হল পবিত্র পোশাক| 5 “ইস্রায়েলের লোকদের কাছ থেকে হারোণ দুটি পুরুষ ছাগল পাপমোচনের নৈবেদ্যর জন্য এবং একটি পুরুষ মেষ হোমবলির জন্য নেবে| 6 তারপর হারোণ ষাঁড়টিকে পাপ মোচনের নৈবেদ্য হিসেবে উপহার দেবে| পাপ মোচনের নৈবেদ্যটি তার নিজের জন্য| নিজেকে এবং তার পরিবারকে পবিত্র করার জন্য হারোণ অবশ্যই এটা করবে| 7 “তারপর হারোণ ছাগল দুটি নেবে এবং তা সমাগম তাঁবুর ঢোকার দরজার মুখে প্রভুর সামনে আনবে| 8 হারোণ ছাগল দুটির জন্য ঘুঁটি চাললে একটা হবে প্রভুর জন্য, অপরটি হবে অজাজেলের জন্য| 9 “তারপর ঘুঁটি চেলে যে ছাগলটি প্রভুর জন্য নির্বাচিত হয় হারোণ অবশ্যই সেটিকে পাপ মোচনের নৈবেদ্য হিসাবে উত্সর্গ করবে| 10 অজাজেলের জন্য ঘুঁটি চেলে যে ছাগলটাকে বেছে নেওয়া হয়েছে তাকে অবশ্যই জীবন্ত অবস্থায় প্রভুর কাছে আনবে| তারপর এই ছাগলটিকে অজাজেলের জন্য মরুভূমিতে পাঠাতে হবে| এটা লোকদের পবিত্র করার জন্যই দরকার| 11 “তারপর তার নিজের জন্য পাপ মোচনের নৈবেদ্য হিসেবে হারোণ একটি ষাঁড় দেবে এবং এইভাবে নিজেকে ও তার পরিবারকে পবিত্র করবে| হারোণ তার নিজের জন্য পাপ মোচনের নৈবেদ্য রূপে ষাঁড়টিকে হত্যা করবে| 12 তারপর সে অবশ্যই প্রভুর কাছে বেদী থেকে তুলে আনা জ্বলন্ত কযলা ভর্তি পাত্রটি আনবে| সুগন্ধী ধূপের মিহি করা গুঁড়ো দুহাত ভর্তি করে নেবে হারোণ| হারোণ পর্দার পিছনের ঘরে সেই মিষ্টি গন্ধের গুঁড়ো আনবে| 13 হারোণ অবশ্যই প্রভুর সামনের আগুনে সেই মিষ্টি গন্ধের ধূপের গুঁড়ো রাখবে| তারপর সুগন্ধ গুঁড়োর মেঘ চুক্তির সিন্দুকের বিশেষ আচ্ছাদনকে ঢেকে দেবে, ফলে হারোণ মারা ইস্রায়েলেবে না| 14 হারোণ অবশ্যই ষাঁড়টি থেকে কিছুটা রক্ত নিয়ে তার আঙুল দিয়ে তা পূর্বদিকে বিশেষ আচ্ছাদন পর্য়ন্ত ছিটিয়ে দেবে| সে রক্তটা সেই বিশেষ আচ্ছাদনের সামনে তাকে আঙুল দিয়ে সাত বার ছিযিে দিতে হবে| 15 “তারপর হারোণ লোকদের জন্য পাপ মোচনের নৈবেদ্যর ছাগলটিকে হত্যা করে সেই রক্ত পর্দার আড়ালের ঘরটিতে আনবে| ষাঁড়ের রক্ত নিয়ে ইস্রায়েলে করেছিল, ছাগলটির রক্ত নিয়ে হারোণ ঠিক তাই করবে| হারোণ অবশ্যই ছাগলের রক্ত বিশেষ আচ্ছাদনের ওপর এবং আচ্ছাদনের সামনে ছিটিয়ে দেবে| 16 এইভাবে সে ঐ পবিত্রতম জায়গাটিকে ইস্রায়েলের লোকদের তাদের অশুচিতা, বিরুদ্ধাচরণ এবং তাদের কৃত সমস্ত পাপ থেকে শুচি করবে| হারোণকে সমাগম তাঁবুর জন্য এই সমস্ত কিছু করতে হবে, কারণ এটা অশুচি লোকদের মাঝখানে আছে| 17 যখন হারোণ পবিত্রতম জায়গাটিকে এবং লোকদের শুদ্ধ করার জন্য ইস্রায়েলেয, তখন সে সেখান থেকে বেরিয়ে না আসা পর্য়ন্ত সমাগম তাঁবুতে কোন লোক থাকবে না| সুতরাং হারোণ নিজেকে এবং তার পরিবারকে এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের শুচি করবে| 18 “তারপর হারোণ বেরিয়ে এসে প্রভুর সামনে বেদীর কাছে ইস্রায়েলেবে এবং বেদীটাকে শুচি করবে| হারোণ কিছুটা ষাঁড়ের রক্ত ও কিছুটা ছাগলের রক্ত নেবে এবং তা বেদীর সব দিকের কোণগুলিতে ফেলবে| 19 অতঃপর হারোণ সাতবার তার আঙুল দিয়ে কিছুটা রক্ত বেদীর ওপর ছিটিয়ে দেবে| এইভাবে হারোণ বেদীটিকে ইস্রায়েলের লোকদের অশুচিতা থেকে শুচি করে পবিত্র করবে| 20 “পবিত্রতম স্থান, সমাগম তাঁবু এবং বেদীকে পবিত্র করার পর হারোণ জীবন্ত ছাগলটি প্রভুর কাছে আনবে|” 21 হারোণ তার হাত দুটি জীবন্ত ছাগলের মাথায় রাখবে এবং তার ওপর ইস্রায়েলের লোকদের পাপ ও অপরাধগুলি স্বীকার করবে| এইভাবে হারোণ লোকদের পাপসমূহকে ছাগলের মাথায় চাপাবে| তারপর সে ছাগলটাকে মরুভূমিতে পাঠাবে| একজন মানুষ নিযুক্ত করা হবে এবং সে ছাগলটিকে নিয়ে ইস্রায়েলেওযার জন্য তৈরী থাকবে| 22 সুতরাং ছাগলটা নিজের ওপর সমস্ত মানুষের পাপ বয়ে নিয়ে খোলা মরুভূমিতে চলে ইস্রায়েলেবে| যে মানুষটি ছাগলটিকে নিয়ে ইস্রায়েলেবে সে তাকে মরুভূমিতে ছেড়ে দিয়ে আসবে| 23 “তারপর হারোণ সমাগম তাঁবুতে ঢুকবে| পবিত্র স্থানে আসার সময় সে যে লিনেনের কাপড়-চোপড় পরেছিল সেগুলি সে খুলে ফেলবে| কাপড়গুলি সে অবশ্যই সেখানে ছেড়ে রাখবে| 24 একটি পবিত্র জায়গায় সে তার সারা শরীর জল দিয়ে ধুয়ে নেবে| তারপর সে তার অন্যান্য বিশেষ পোশাক পরবে| সে বাইরে আসবে এবং তার নিজের হোমবলি ও লোকদের হোমবলি উত্সর্গ করবে| সে নিজেকে এবং লোকদের শুচি করবে| 25 তারপর সে বেদীর ওপর পাপ মোচনের নৈবেদ্যর চর্বি পোড়াবে| 26 “যে লোকটি ছাগলটিকে অজাজেলের জন্য নিয়ে গিযেছিল, সে তার জামাকাপড় ধুয়ে নেবে এবং জলে স্নান করবে| তারপর সে তাঁবুর মধ্যে আসতে পারে| 27 “পাপমোচনের নৈবেদ্যর ষাঁড় ও ছাগলটিকে শিবিরের বাইরে আনতে হবে| (ঐ সমস্ত প্রাণীর রক্ত পবিত্র জিনিসগুলিকে পবিত্র জায়গায় শুচি করার জন্য আনা হয়েছিল|) যাজকরা অবশ্যই ঐ সমস্ত প্রাণীর চামড়া, শরীর এবং শরীরের বর্য়্জ অংশগুলি আগুনে পোড়াবে| 28 তারপর যে ব্যক্তি তাদের পোড়াবে সে অবশ্যই তার পোশাক-পরিচ্ছদ ধুয়ে ফেলবে এবং তার সমস্ত শরীর জলে ধোবে| তারপর সে তাঁবুতে প্রবেশ করতে পারে| 29 “তোমাদের ক্ষেত্রে এই আইন সর্বদাই চলবে: সপ্তম মাসের দশ দিনের দিন তোমাদের কোন খাদ্য গ্রহণ করা চলবে না এবং অবশ্যই তোমরা কোন কাজ করবে না| তোমাদের দেশে বাস করা কোন ভ্রমণকারী বা বিদেশী কোন কাজ করতে পারবে না| 30 কারণ এই দিনে যাজক তোমাদের পবিত্র করার জন্য তোমাদের পাপের প্রাযশ্চিত্ত করবে| তখন তোমরা প্রভুর কাছে শুচি হবে| 31 তোমাদের জন্য এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশ্রামের দিন| তোমরা অবশ্যই খাওয়া-দাওয়া করবে না|এই আইন চিরকাল চলবে| 32 “সুতরাং প্রধান যাজক হিসেবে মনোনীত ব্যক্তিটি জিনিসপত্র পবিত্র করার জন্য এই পর্বাদি পালন করবে| এই প্রধান যাজক, ইস্রায়েলেকে তার পিতারই স্থানে নিয়োগ করা হয়েছে, সে পবিত্র লিনেনের পোশাক পরিচ্ছদ পরবে| 33 সে অবশ্যই পবিত্রতম স্থান সমাগম তাঁবু এবং বেদী শুচি করবে এবং সে অবশ্যই যাজকদের ও ইস্রায়েলের লোকদের শুচি করবে| 34 ইস্রায়েলের লোকদের পবিত্র করার এই বিধি চিরকালের জন্য থাকবে| ইস্রায়েলের লোকদের তাদের পাপ থেকে শুচি করার জন্য তোমরা প্রত্যেক বছরে একবার এসব করবে|”তাই মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ মতো তারা এইসব করেছিল|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “হারোণ আর তার পুত্রদের এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের বলো, প্রভু এই আদেশ করেছেন| 3 যদি একজন ইস্রায়েলীয় একটি ষাঁড় অথবা একটি মেষ বা একটি ছাগল শিবিরের মধ্যে বা তাঁবুর বাইরে হত্যা করে, 4 কিন্তু সেই প্রাণীটিকে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে না আনে এবং সেই প্রাণীর একটা অংশ উপহার হিসেবে প্রভুকে নিবেদন না করে, তবে সেই ব্যক্তি রক্তপাত ঘটিযেছে বলে অবশ্যই দোষী গন্য হবে| সেই ব্যক্তিকে অন্য লোকদের থেকে অবশ্যই বিচ্ছিন্ন করতে হবে| 5 এই নিয়ম এই জন্য ইস্রায়েলেতে ইস্রায়েলের লোকরা যে সব প্রাণীদের মাঠে হত্যা করবে তাদের সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে প্রভুর কাছে মঙ্গল নৈবেদ্য হিসাবে প্রভুর কাছে উত্সর্গ করে| 6 তারপর যাজক ওইসব প্রাণীদের রক্ত সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে প্রভুর বেদীর ওপর নিক্ষেপ করবে এবং যাজক বেদীর ওপর ঐসব প্রাণীর মেদ দগ্ধ করবে| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 7 তারা অবশ্যই আর কোন বলি তাদের ‘ছাগ দেবতার’ কাছে উত্সর্গ করবে না| তারা বেশ্যাদের মত অন্য দেবতার পিছনে ছুটেছে| এই সমস্ত নিয়ম চিরকাল ধরে চলবে| 8 “লোকদের বলো ইস্রায়েলের কুলজাত কোন ব্যক্তি বা তাদের মধ্যে বসবাসকারী কোন বিদেশী যদি হোমবলি উপহার দেয়, 9 কিন্তু তা সমাগম তাঁবুর প্রবেশ মুখে না আনে এবং প্রভুকে নিবেদন না করে তবে সেই ব্যক্তিকে তার লোকদের থেকে অবশ্যই বিচ্ছিন্ন হতে হবে| 10 “কোন ব্যক্তি রক্ত খেলে আমি তার বিরুদ্ধে| সেই ব্যক্তি ইস্রায়েলের নাগরিক হোক অথবা তোমাদের মধ্যে বাস করা কোন বিদেশী হোক না কেন তাতে কিছু আসে ইস্রায়েলেয না| আমি তাকে তার লোকদের থেকে বিচ্ছিন্ন করবো| 11 কারণ দেহটির জীবন রক্তের মধ্যে রযেছে| আমি সেই রক্ত বেদীর ওপর ঢেলে তোমাদের নিজেদের শুচি করার জন্য দিয়েছি| রক্তে প্রাণ আছে বলেই তা প্রাযশ্চিত্ত সাধন করে| 12 তাই আমি ইস্রায়েলের লোকদের বলি: তোমাদের কোন ব্যক্তিই রক্ত খেতে পারো না| তোমাদের মধ্যে বাস করা কোন বিদেশীও রক্ত খেতে পারে না| 13 “যদি কোন ব্যক্তি খাওয়া যেতে পারে এমন একটি বন্য প্রাণী বা একটি পাখী শিকার করে ধরে তাহলে সেই ব্যক্তি অবশ্যই ়শিকারের রক্ত মাটিতে ফেলবে এবং তা ধূলো দিয়ে ঢেকে দেবে, কারণ প্রতিটি প্রাণীর রক্তে তার জীবন রযেছে| যদি সেই ব্যক্তি ইস্রায়েলীয় অথবা তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী একজন বিদেশী হয় তাতে কিছু আসে ইস্রায়েলেয না| 14 প্রতিটি প্রাণীর রক্তেই তার জীবন রযেছে| তাই আমি ইস্রায়েলের লোকদের এই আদেশ দিচ্ছি; তারা যেন কোন প্রাণীর রক্ত না খায়! কোন ব্যক্তি যদি রক্ত খায় অবশ্যই সে তার লোকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হবে| 15 “আরও যদি কোন ব্যক্তি এমন প্রাণী ভক্ষণ করে ইস্রায়েলে নিজে নিজেই মরে গেছে, অথবা যদি অন্য কোন প্রাণীর দ্বারা নিহত প্রাণী ভক্ষণ করে, অবশ্যই তার কাপড়-চোপড় ধোবে এবং জল দিয়ে তার গোটা দেহ ধুয়ে ফেলবে| সেই ব্যক্তি সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| তারপর শুচি হবে| সেই ব্যক্তিটি ইস্রায়েলের নাগরিক হোক বা ব্যক্তিটি তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী একজন বিদেশী হোক তাতে কিছু ইস্রায়েলেয আসে না| 16 যদি সেই ব্যক্তি তার কাপড়-চোপড় ধৌত না করে অথবা শরীরকে স্নান না করায, তাহলে সে তার নিজ অপরাধ বহন করবে|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: আমি তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর| 3 “অতীতে তোমরা মিশরে বাস করতে| সেই দেশে ইস্রায়েলে ইস্রায়েলে করা হত, তোমরা অবশ্যই সেগুলি করবে না| আমি তোমাদের কনান দেশে নিয়ে ইস্রায়েলেচ্ছি| ঐ দেশেও ইস্রায়েলে করা হয় তোমরা অবশ্যই সেগুলি করবে না! তাদের রীতিনীতি অনুসরণ করবে না| 4 “তোমরা অবশ্যই আমার নিয়মাবলী মান্য করবে এবং আমার বিধি সকল অনুসরণ করবে| সেইসব নিয়মাবলী অনুসরণে নিশ্চিত হও! কারণ আমিই তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর| 5 সুতরাং তোমরা অবশ্যই আমার বিধিসকল ও নিয়মাবলী মান্য করবে| যদি কোন ব্যক্তি আমার বিধিসকল ও নিয়মাবলী মান্য করে, সে জীবিত থাকবে! আমিই প্রভু! 6 “তোমরা কখনও তোমাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করবে না| আমি তোমাদের প্রভু| 7 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের পিতার অপমান করবে না| পিতা বা মাতার সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করবে না| সেই মহিলা তোমার মা, সুতরাং তার সঙ্গে তোমার অবশ্যই য়ৌন সংসর্গ থাকবে না| 8 তোমাদের পিতার স্ত্রী এমন কি যদি সে তোমাদের মা নাও হয় তার সঙ্গে য়ৌন সম্পর্কে ইস্রায়েলেবে না| কেন? কারণ তাহলে তোমার পিতাকে অসম্মান করা হবে| 9 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের বোনের সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করবে না| যদি সে তোমাদের পিতার বা মাতার কন্যা হয়, তাতে কিছু ইস্রায়েলেয আসে না এবং যদি তোমাদের বোন তোমাদের বাড়ীতে বা অন্য জায়গায় বড় হয় তাতেও এই নিয়ম বলবত্ থাকবে| 10 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের নাতনীর সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করবে না| তারা তোমাদেরই একটা অংশ| 11 “যদি তোমাদের পিতা এবং তার স্ত্রীর একটি কন্যা থাকে, তাতে সে হয় তোমার বোন| তোমরা অবশ্যই তার সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করবে না| 12 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের পিতার বোনের সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করবে না| সে হল তোমাদের পিতার ঘনিষ্ঠ আত্মীযা| 13 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের মাতার বোনের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক করবে না| সে তোমাদের মাতার ঘনিষ্ঠ আত্মীযা| 14 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের বাবার ভাইকে অপমান করবে না| তোমাদের কাকার স্ত্রীর কাছেও য়ৌন সংসর্গের জন্য ইস্রায়েলেবে না| সে তোমাদের কাকীমা| 15 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের পুত্রবধুর সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করবে না| সে তোমাদের ছেলের স্ত্রী| তোমাদের অবশ্যই তার সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক থাকবে না| 16 “ভাইযের স্ত্রীর সঙ্গে অবশ্যই তোমাদের য়ৌন সম্পর্ক থাকবে না| তা তোমার ভাইকে অপমান করার মত হবে| 17 “একজন মা এবং তার মেয়ের সঙ্গে তোমাদের য়ৌন সংসর্গ অবশ্যই থাকবে না| সেই মহিলার নাতনীর সঙ্গেও য়ৌন সম্পর্ক রেখো না| যদি এই নাতনী এই স্ত্রীলোকের পুত্রের বা কন্যার কন্যা হয় তাতেও কিছু ইস্রায়েলেয আসে না| তার নাতনীরা তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়জন| তাদের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক থাকা অন্যায়| 18 “তোমার স্ত্রী জীবিত অবস্থায়, তুমি অবশ্যই তার বোনকে বিয়ে করবে না| এতে বোনরা শত্রু হয়ে উঠবে| তোমরা অবশ্যই তোমাদের স্ত্রীর বোনের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক রাখবে না| 19 “মাসিক রক্তক্ষরণের সময় একজন মহিলার কাছে তোমরা অবশ্যই য়ৌন সংসর্গের জন্য ইস্রায়েলেবে না| এই সময়টায সে অশুচি| 20 “এবং তোমাদের প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে তোমরা অবশ্যই য়ৌন সংসর্গ করবে না| এটা তোমাদের অপবিত্র করবে| 21 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের শিশুদের কোন একজনকে আগুনের মধ্য় দিয়ে মোলক দেবতার উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করবে না| একাজ করে তোমরা অবশ্যই তোমাদের ঈশ্বরের নামকে অপবিত্র করবে না| আমি তোমাদের প্রভু! 22 “একজন পুরুষের অন্য একজন পুরুষের সঙ্গে স্ত্রীলোকের ন্যায য়ৌন সম্পর্ক অবশ্যই থাকবে না| তা হলো ভযঙ্কর পাপ| 23 “কোন ধরণের প্রাণীর সঙ্গে তোমাদের য়ৌন সম্পর্ক অবশ্যই থাকবে না| এটা তোমাদের কেবল নোংরা করবে| একজন স্ত্রীলোকেরও কোন প্রাণীর সঙ্গে অবশ্যই য়ৌন সম্পর্ক থাকবে না| এটা প্রকৃতি বিরুদ্ধ| 24 “এইসব ভুল কাজ করে তোমরা নিজেদের অশুচি করো না| যে সব জাতিগণকে আমি তোমাদের সামনে তাদের দেশ থেকে দূর করে দেব তারা এই সমস্ত কর্ম দ্বারা নিজেদের অশুচি করেছে| 25 তাই দেশ অপবিত্র হয়ে গেছে| তাই এর পাপের জন্য আমি শাস্তি দেব এবং সেই দেশ ওখানে বসবাসকারী সেই সব মানুষদের বমি করার মত বের করে দেবে| 26 “সুতরাং তোমরা অবশ্যই আমার বিধি ও নিয়মাবলী মান্য করবে| তোমরা অবশ্যই ঐসব ভযঙ্কর পাপের কোন একটিও করবে না| সেই সব নিয়মাবলী ইস্রায়েলের নাগরিকদের জন্যই এবং সেগুলি তোমাদের মধ্যে বাসকারী লোকেদের জন্যই| 27 তোমাদের আগে ঐ সব দেশে ইস্রায়েলেরা বসবাস করত, তারা ঐ সমস্ত ভযঙ্কর পাপ করে দেশটাকে নোংরা করেছিল| 28 যদি তোমরা এই ভযঙ্কর জিনিসগুলি করো, তাহলে তোমরা দেশকে কলুষিত করবে এবং তা তোমাদের দেশের বাইরে বের করে দেবে, যেমন করে তোমাদের সামনে জাতিগুলিকে বের করে দিয়েছিল| 29 যদি কোন ব্যক্তি ঐ সমস্ত ভযঙ্কর পাপগুলির কোনো একটি করে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে তার নিজের লোকদের কাছ থেকে অবশ্যই বিচ্ছিন্ন করা হবে| 30 তোমরা অবশ্যই আমার বিধি মানবে! তোমরা অবশ্যই ঐসব ভযঙ্কর পাপসমূহের কোন একটিও করবে না ইস্রায়েলে তোমাদের পূর্বে সেখানে প্রচলিত ছিল| ওইসব ভযঙ্কর পাপ দিয়ে তোমরা নিজেদের অবশ্যই কলুষিত করবে না| আমি তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের বলো: আমি তোমাদের প্রভু ঈশ্বর| আমি পবিত্র সুতরাং তোমরা অবশ্যই পবিত্র হবে!” 3 “তোমাদের মধ্যে প্রত্যেকটি ব্যক্তি তার পিতা এবং মাতাকে সম্মান দেবে এবং আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনগুলিপালন করবে| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর| 4 “মূর্ত্তি পূজো করবে না| তোমাদের নিজেদের জন্য গলিত ধাতু দিয়ে দেবতার মূর্ত্তি তৈরী করবে না| আমি প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! 5 “যখন তোমরা ঈশ্বরকে মঙ্গল নৈবেদ্য উপহার দাও, তোমরা অবশ্যই তা সঠিকভাবে দেবে ইস্রায়েলেতে তা গ্রাহ্য হয়| 6 তোমরা যেদিন নৈবেদ্য দেবে সেদিন এবং পরের দিনও তা আহার করতে পারবে; কিন্তু যদি সেই নৈবেদ্যর কোন অংশ তৃতীয় দিনেও পড়ে থাকে, তাহলে তা অবশ্যই আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে| 7 “তোমরা সেই নৈবেদ্যর কোনো অংশই তৃতীয় দিনে আহার করবে না; সেটা হবে অশুচি, সেটা অগ্রাহ্য হবে| 8 “একজন ব্যক্তি যদি তা করে তবে সে সেই পাপের কারণে দোষী হবে| কারণ সে প্রভুর জিনিসগুলিকে শ্রদ্ধা করেনি| সেই লোকটি তার লোকদের থেকে অবশ্যই বিচ্ছিন্ন হবে| 9 “যখন তোমরা শস্য কাটো, তখন তোমাদের ক্ষেত্রের কোণ পর্য়ন্ত শস্য কেটো না| শস্য যদি মাটিতে পড়ে ইস্রায়েলেয, তোমরা তা কুড়িযে নিও না| 10 “তোমাদের দ্রাক্ষা বাগানের সব দ্রাক্ষা তুলবে না এবং যেগুলি মাটিতে পড়ে থাকে সেগুলিও তুলে নেবে না| কেন? কারণ সেগুলি তোমরা গরীব এবং তোমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে ভ্রাম্য়মাণ মানুষদের জন্য ফেলে রাখবে| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! 11 “তোমরা অবশ্যই চুরি করবে না| তোমরা অবশ্যই লোকদের ঠকাবে না এবং পরস্পরের কাছে মিথ্য়ে কথা বলবে না| 12 মিথ্য়ে প্রতিশ্রুতি দিতে তোমরা অবশ্যই আমার নাম ব্যবহার করবে না| তা করলে ঈশ্বরের নামের অসম্মান করা হয়| আমিই তোমাদের প্রভু! 13 “তোমাদের প্রতিবেশীর প্রতি তোমরা অবশ্যই মন্দ ব্যবহার করবে না| তোমরা অবশ্যই তাকে লুঠ করবে না| তোমরা সকাল না হওয়া পর্য়ন্ত সারা রাত ধরে অবশ্যই একজন ভাড়া করা শ্রমিকের বেতন আটকাবে না| 14 “তোমরা অবশ্যই একজন বধির মানুষকে অভিশাপ দেবে না| অন্ধ মানুষের সামনে এমন কিছু রেখো না ইস্রায়েলেতে সে পড়ে ইস্রায়েলেয| তোমরা অবশ্যই ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করবে| আমিই তোমাদের প্রভু! 15 “বিচারের ব্যাপারে তোমরা অবশ্যই পক্ষপাতহীন হবে| তোমরা অবশ্যই দরিদ্র মানুষের প্রতি বিশেষ পক্ষপাতিত্ব দেখাবে না| এবং তোমরা অবশ্যই অতি গুরুত্বপূর্ণ লোকদেরও বিশেষ সম্মান দেখাবে না| তোমরা যখন প্রতিবেশীর বিচার করবে তখন অবশ্যই অন্যায় করবে না| 16 অন্য লোকদের বিরুদ্ধে তোমরা অবশ্যই মিথ্য়া গল্প রটিযে বেড়াবে না| এমন কিছু করবে না ইস্রায়েলেতে তোমাদের প্রতিবেশীর জীবন বিপন্ন হয়| আমিই তোমাদের প্রভু! 17 “তোমরা তোমাদের ভাইকে অবশ্যই মনে মনে ঘৃণা করবে না| যদি তোমাদের প্রতিবেশী ভুল করে, তাহলে তার সাথে সে বিষয়ে কথা বল, কিন্তু তাকে ক্ষমা করো; তাহলে তুমি তার দোষের ভাগীদার হবে না| 18 “তোমার প্রতি লোকরা খারাপ ইস্রায়েলে কিছু করেছে, তা ভুলে যেও; প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করো না| তোমাদের প্রতিবেশীকে নিজেদের মত করে ভালোবাসো| আমিই তোমাদের প্রভু! 19 “তোমরা অবশ্যই আমার বিধিসকল মান্য করবে| তোমরা অবশ্যই দু পৃথক ধরণের প্রাণীর মধ্যে সঙ্কর প্রজনন করবে না| তোমরা অবশ্যই তোমাদের ক্ষেতে দু আলাদা ধরণের বীজ বপন করবে না| দুই ধরণের সুতো দিয়ে তৈরী পোশাক তোমরা অবশ্যই পরবে না| 20 “এমন ঘটতে পারে যে একজন ব্যক্তি, অন্যের কাছে দাসী এমন একজনের সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ করেছে; কিন্তু এই দাসী মহিলাটি বিক্রিত হয়নি বা তাকে তার স্বাধীনতা দেওয়া হয় নি| যদি তা ঘটে, তাহলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই শাস্তি হবে; কিন্তু তাদের মৃত্যুদণ্ড হবে না, কারণ স্ত্রীলোকটি স্বাধীন নয| 21 “লোকটি প্রভুর জন্য সমাগম তাঁবুর প্রবেশমুখে অবশ্যই তার দোষ মোচনের নৈবেদ্য হিসাবে একটি পুরুষ মেষশাবক আনবে| 22 “যাজক লোকটিকে শুচি করার জন্য পুরুষ মেষশাবকটিকে দোষার্থক নৈবেদ্য হিসেবে প্রভুর সামনে উত্সর্গ করে তার পাপের প্রাযশ্চিত্ত করবে| তারপর লোকটিকে তার কৃত পাপ সমুহের জন্য ক্ষমা করা হবে| 23 “ভবিষ্যতে তোমরা তোমাদের দেশে প্রবেশ করে যখন খাদ্যের জন্য কোন জাতের গাছ লাগাবে, তখন ঐ গাছের ফল ব্যবহারের আগে অবশ্যই তিন বছর অপেক্ষা করবে| এই সময় সেই ফল অশুচি বলে গন্য করবে এবং তা খাবে না| 24 “চতুর্থ বছরে গাছের ফল হবে প্রভুর| প্রভুর প্রতি প্রশংসা হিসেবে এটা হবে পবিত্র নৈবেদ্য| 25 “তারপর পঞ্চম বছরে তোমরা সেই গাছ থেকে ফল পেতে পারো! এবং এইভাবে গাছটি তোমাদের জন্য আরো ফল দেবে| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! 26 “রক্ত লেগে থাকা অবস্থায় কোন মাংস তোমরা অবশ্যই খাবে না|“তোমরা অবশ্যই ইস্রায়েলেদুবিদ্য়া এবং গণক বিদ্য়ার ব্যবহার করতে চেষ্টা করবে না| 27 “তোমরা অবশ্যই তোমাদের মাথার পাশে গজানো কেশগুলি গোল করে গোটাবে না| তোমরা অবশ্যই তোমাদের দাড়ির কোণ কাটবে না| 28 “মৃত ব্যক্তিদের স্মরণে রাখার জন্য তোমরা অবশ্যই তোমাদের দেহে কাটা ছেঁড়া করবে না| তোমরা অবশ্যই নিজেদের ওপর কোন উল্কি রাখবে না| আমিই প্রভু! 29 “তোমার কন্যাকে বেশ্যা হতে দিও না| তা করলে তাকে অপমান করা হয়| দেশের মানুষজনও তাহলে বেশ্যার মত অর্থাত্ ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বস্তের মত আচরণ করবে না এবং দেশে মন্দ জিনিসে পূর্ণ হবে না| 30 “আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনগুলিতে তোমরা অবশ্যই কাজ করবে না| তোমরা অবশ্যই আমার পবিত্রস্থানকে সম্মান দেবে| আমিই প্রভু! 31 “ভুতুড়িযাদের বা ডাইনীদের কাছে মন্ত্রণার জন্য ইস্রায়েলেবে না| তাদের কাছে যেও না, তারা শুধু তোমাকে অশুচি করবে| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! 32 “বযস্ক ব্যক্তিদের সম্মান দেখাবে; যখন তাঁরা ঘরে ঢোকেন উঠে দাঁড়াবে| তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে| আমিই প্রভু! 33 “তোমাদের দেশে বাস করা বিদেশীদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করবে না| 34 “তোমাদের নিজেদের নাগরিকদের মতই বিদেশীদের প্রতি সমান ব্যবহার করবে| তোমাদের নিজেদের যেমন ভালোবাস, বিদেশীদের তেমনি ভালোবাসবে| কারণ একসময় তোমরা মিশরে বিদেশী ছিলে| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! 35 “তোমরা বিচারে অন্যায় করবে না এবং জিনিসপত্র মাপার ও ওজন করার ব্যাপারে সত্ হবে| 36 “শস্য ওজন করার জন্য এবং তরল পদার্থ মাপার জন্য তোমাদের ওজন পাল্লা, বাটখারা, ঝুড়ি ও পাত্রগুলি সঠিক হওয়া উচিত্| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! আমি তোমাদের মিশর দেশ থেকে বাইরে এনেছি| 37 “তোমরা অবশ্যই আমার সমস্ত বিধি এবং নিয়মাবলী মনে রাখবে এবং সেগুলি মান্য করবে| আমিই প্রভু!”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “তুমি অবশ্যই ইস্রায়েলের লোকদের আরও এই বিষয়গুলি বলো: তোমাদের দেশের কোন মানুষ যদি মোলকের মূর্ত্তির সামনে তার শিশুদের মধ্যে একটিকে উত্সর্গ করে, তবে সেই মানুষটির অবশ্যই প্রাণদণ্ড হবে| যদি সেই ব্যক্তি ইস্রায়েলের নাগরিক হয় বা ইস্রায়েলে বাস করা একজন বিদেশী হয় তাতে কিছু ইস্রায়েলেয আসে না| তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করবে| 3 “আমি সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াব এবং তাকে তার লোকদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করব, কারণ সে তার শিশুকে মোলকের উদ্দেশ্যে দিয়েছে| সে আমার পবিত্র নামকে শ্রদ্ধা করেনি এবং আমার পবিত্র স্থানকে অশুচি করেছে| 4 “কিন্তু সাধারণ মানুষ সেই ব্যক্তিকে উপেক্ষা করে এবং যে তার শিশুদের মোলককে দিয়েছে তাকে হত্যা না করে, 5 “তাহলে আমি সেই ব্যক্তি এবং তার পরিবারের বিরোধিতা এবং তাকে তার লোকদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করব| ইস্রায়েলেরা সেই ব্যক্তিকে অনুসরণ করে মোলকের পিছনে ইস্রায়েলে আমি তাদেরও বিচ্ছিন্ন করব| 6 “যদি কোন ব্যক্তি ভুতুড়িযা এবং মায়াবীদের কাছে উপদেশের জন্য ইস্রায়েলেয আমি তার বিরোধী হবো| সেই ব্যক্তি আমার প্রতি অবিশ্বাসী, তাই আমি তাকে তার লোকদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করব| 7 “তোমরা পৃথক হও! নিজেদের পবিত্র করো| কারন আমি পবিত্র! আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! 8 আমার বিধিগুলি স্মরণে রাখো এবং মেনে চলো| আমি প্রভু এবং আমিই সেই, যিনি তোমাদের পবিত্র করেন| 9 “যদি কোনো মানুষ তার পিতা কিম্বা মাতাকে অভিশাপ দেয়, তার প্রাণদণ্ড হবে| পিতামাতাকে অভিশাপ দিয়েছে বলে সে তার নিজের মৃত্যুর জন্য দাযী! 10 “যদি কোন পুরুষের তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক থাকে, তাহলে সেই পুরুষ এবং মহিলা দুজনেই ব্যভিচারের দোষে দোষী হবে| সেই পুরুষ এবং মহিলা দুজনের অবশ্যই যেন প্রাণদণ্ড হয়| 11 “যদি কোন পুরুষের তার পিতার স্ত্রীর সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ থাকে, তাহলে পুরুষ এবং রমণী দুজনকে অবশ্যই যেন মেরে ফেলা হয়| তারা নিজেরা তাদের মৃত্যুর জন্য দাযী, কারণ এই কাজ দ্বারা তার পিতাকে অপমান করা হয়| 12 “যদি একজন পুরুষের তার পুত্রবধূর সঙ্গে য়ৌন সংসর্গ থাকে, তাহলে দুজনকে অবশ্যই যেন মেরে ফেলা হয়| এহল অনাচার, তারা তাদের নিজেদের মৃত্যুর জন্য দাযী| 13 “যদি কোন পুরুষের অন্য এক পুরুষের সঙ্গে একজন স্ত্রীলোকের মত য়ৌন সম্পর্ক থাকে তবে এই দুজন পুরুষ এক ভযঙ্কর পাপ কার্য়্য়ে লিপ্ত| তাদের অবশ্যই যেন মেরে ফেলা হয়| তারা তাদের নিজেদের মৃত্যুর জন্য দাযী| 14 “কোন পুরুষের পক্ষে একই সাথে কোন স্ত্রীলোক এবং তার মাতাকে বিয়ে করা অত্যন্ত মন্দ কাজ| লোকেরা সেই মানুষটিকে অবশ্যই পোড়াবে এবং দুজন স্ত্রীলোককে আগুনে দেবে যেন এই ধরণের কুকর্ম আর কেউ না করে| 15 “যদি একজন মানুষ কোন এক জন্তুর সঙ্গে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় তবে সেই মানুষটি অবশ্যই প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তোমরা অবশ্যই প্রাণীটিকেও হত্যা করবে| 16 যদি একজন স্ত্রীলোকের কোন এক জন্তুর সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক থাকে, তাহলে তোমরা অবশ্যই স্ত্রীলোক ও প্রাণীটিকে হত্যা করবে| তারা অবশ্যই প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত হবে| তারা তাদের নিজেদের মৃত্যুর জন্য দাযী| 17 “যদি কেউ তার বোন, তার সত্ মাতা বা সত্ পিতার মেয়েকে বিবাহ করে এবং একে অপরের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় তবে এটা লজ্জাজনক বিষয়| তারা অবশ্যই প্রকাশ্যে শাস্তি পাবে| তারা অবশ্যই তাদের লোকদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে| যে মানুষ তার বোনের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক করে, সে অবশ্যই তার পাপের জন্য শাস্তি পাবে! 18 “মাসিক রক্তস্রাবের সময় কোন রমণীর সঙ্গে যদি কোন পুরুষের য়ৌন সংসর্গ হয়, তাহলে পুরুষ এবং রমনী দুজনই তাদের লোকদের থেকে অবশ্যই বিচ্ছিন্ন হবে| তারা পাপ করেছে কারণ সেই পুরুষ রক্তের উত্সকে প্রকাশ করেছে এবং সেই স্ত্রী তার রক্তের উত্সকে অনাবৃত করেছে| 19 “তোমাদের মাতার বোন বা তোমাদের পিতার বোনের সঙ্গে অবশ্যই য়ৌন সম্পর্ক করবে না| সেটা হল গর্হিত আচার| তোমাদের পাপসমূহের জন্য তোমরা অবশ্যই শাস্তি পাবে| 20 “একজন পুরুষ অবশ্যই তার কাকার স্ত্রীর সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক করবে না| এ কাজ তার কাকাকে অপমান করে| সেই পুরুষ এবং তার কাকার স্ত্রী তাদের পাপসমুহের জন্য শাস্তি পাবে| তারা সন্তানসন্ততিহীন থেকেই মারা ইস্রায়েলেবে| 21 একজন পুরুষের পক্ষে তার নিজের ভ্রাতৃবধুকে বিবাহ করা অন্যায়| এ কাজ তার ভাইকে অসম্মান করে| তাদের সন্তানসন্ততি থাকবে না| 22 “তোমরা অবশ্যই আমার সমস্ত বিধিসমুহ এবং নিয়মাবলি মনে রাখবে এবং সেগুলি মান্য করবে| আমি তোমাদের যে দেশে নিয়ে ইস্রায়েলেচ্ছি, সেই দেশে বসবাসকালে তোমরা আমার বিধিসমুহ এবং নিয়মাবলী মান্য করো, তাহলে সেই দেশ তোমাদের বিতাড়িত করবে না| 23 তোমাদের সামনে যে সব জাতিকে আমি সেই দেশ থেকে দূর করে দিচ্ছি, তাদের মত জীবনইস্রায়েলেপন করো না| তারা ঐ সমস্ত পাপ কাজ করত তাই আমি তাদের ঘৃণা করলাম| 24 “আমি তোমাদের বলেছি যে তোমরা তাদের জমি পাবে| আমি তা তোমাদের দেব| সেই দেশে খাদ্য ও পানীয়ের কোন অভাব হবে না| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর!“আমি তোমাদের জন্য জাতির থেকে পৃথক করে আমার বিশেষ লোকজন করে তুলেছি| 25 সুতরাং তোমরা অবশ্যই অশুচি প্রাণীদের থেকে শুচি প্রাণীদের এবং অশুচি পাখীদের থেকে শুচি পাখীদের আলাদা করে নেবে| ঐ সব অশুচি পাখী, প্রাণী এবং ইস্রায়েলেরা মাটিতে বুক দিয়ে হাঁটে, তা আহার করে নিজেদের অশুচি করো না| আমি ঐসব প্রানীগুলোকে অশুচি বলে নির্দিষ্ট করেছি| 26 আমি তোমাদের অন্য জাতির থেকে আলাদা করে আমার নিজস্ব করে তুলেছি| তাই তোমরা অবশ্যই পবিত্র হবে! কেন? কারণ আমি প্রভু এবং আমি পবিত্র! 27 “কোন পুরুষ অথবা স্ত্রীলোক যদি ভুতুড়িযা বা মায়াবী হয় তাকে অবশ্যই প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে| লোকরা তাদের পাথর দিয়ে হত্যা করবে| তারা নিজেরাই নিজেদের মৃত্যুর জন্য দাযী হবে|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণের পুত্রদের অর্থাত্ যাজকদের এই বিষয়গুলি বলো: একজন যাজক অবশ্যই কোন মৃত ব্যক্তিকে স্পর্শ করে নিজেকে অশুচি করবে না| 2 কিন্তু যদি মৃত ব্যক্তিটি তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের একজন হয় তাহলে সে মৃতদেহ স্পর্শ করতে পারে| যদি মৃত ব্যক্তি তার মাতা কি পিতা, তার পুত্র বা কন্যা, তার ভাই বা 3 তার অবিবাহিত বোন (এই বোন ঘনিষ্ঠ কারণ তার স্বামী নেই, সে মারা গেলে তার জন্য যাজক নিজেকে অশুচি করতে পারে|) হয়, তবে যাজক নিজেকে অশুচি করতে পারে| 4 কিন্তু কেবল বৈবাহিক কারণে সম্পর্কযুক্ত মানুষের জন্য যাজক নিজেকে অশুচি করতে পারে না এবং নিজেকে অপবিত্র করতে পারে না| 5 “যাজকরা তাদের মাথা এমনভাবে কামাবে না ইস্রায়েলেতে তাদের াক দেখা ইস্রায়েলেয অথবা তাদের দাড়ি কামাবে না| যাজকরা তাদের শরীরে অবশ্যই কোন কাটা ছেঁড়া করবে না| 6 যাজকদের তাদের ঈশ্বরের জন্য অবশ্যই পবিত্র হতে হবে| তারা অবশ্যই ঈশ্বরের নামকে শ্রদ্ধা জানাবে, কারণ তারাই রুটি এবং আগুনের দ্বারা তৈরী নৈবেদ্যসমূহ প্রভুর কাছে বয়ে নিয়ে ইস্রায়েলেবে; তাই তারা অবশ্যই পবিত্র হবে| 7 “একজন যাজক অবশ্যই একজন বেশ্যা অথবা একজন ভ্রষ্টা রমণীকে বিবাহ করবে না| সে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে এমন একজন রমণীকে বিবাহ করবে না| কারণ সে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পবিত্র| 8 তোমরা অবশ্যই যাজককে সম্মান করবে কারণ সে ঈশ্বরের কাছে পবিত্র রুটি নিয়ে ইস্রায়েলেয| সে তোমাদের কাছে পবিত্র বলে গণ্য হবে, কারণ আমি পবিত্র! আমিই প্রভু এবং আমি তোমাদের পবিত্র করি! 9 “কোন ইস্রায়েলেজকের মেয়ে বারবণিতা হয়ে নিজেকে অশুচি করলে, সে তার পিতার লজ্জার কারণ হয় সুতরাং তাকে অবশ্যই আগুনে দগ্ধ হতে হবে| 10 “প্রধান যাজক, ইস্রায়েলেকে তার ভাইদের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে, অভিষেকের তেল যার মাথায় ঢালা হয়েছে এবং বিশেষ পোশাক পরার জন্য ইস্রায়েলেকে বাছা হয়েছে সে প্রকাশ্যে তার বিষাদ বোঝাতে যেন তার মাথার চুল এলোমেলো না করে এবং তার কাপড়-চোপড় না ছেঁড়ে| 11 মৃতদের স্পর্শ করে সে নিজেকে অশুচি করবে না এবং কোন মৃত দেহের কাছে ইস্রায়েলেবে না, এমনকি মৃতদেহ যদি তা তার নিজের পিতা বা মাতারও হয়| 12 প্রধান যাজক ঈশ্বরের পবিত্র স্থানের বাইরে অবশ্যই ইস্রায়েলেবে না| তাতে সে অশুচি হতে পারে এবং তখন সে ঈশ্বরের পবিত্র স্থানকে অশুচি করতে পারে| কারণ অভিষেকের তেল প্রধান ইস্রায়েলেজকের মাথায় ঢেলে তাকে বাকী লোকদের থেকে আলাদা করা হয়েছিল| আমিই প্রভু! 13 “প্রধান যাজক অবশ্যই একজন রমনীকে বিবাহ করবে যে কুমারী| 14 প্রধান যাজক এমন কোন রমণীকে অবশ্যই বিবাহ করবে না যার সঙ্গে অন্য পুরুষের য়ৌন সম্পর্ক ছিল| প্রধান যাজেক অবশ্যই একজন বারবনিতা, স্বামী পরিত্যক্তা রমণী অথবা একজন বিধবাকে বিবাহ করবে না| প্রধান যাজক অবশ্যই তার নিজের লোকদের মধ্যে থেকে একজন কুমারীকে বিয়ে করবে| 15 এইভাবে লোকরা তাদের সন্তানসন্ততিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে|আমি প্রভু, প্রধান যাজককে তার বিশেষ কাজের জন্য পৃথক করেছি|” 16 প্রভু মোশিকে বললেন, 17 “হারোণকে বলো: পুরুষানুক্রমে তোমার বংশের মধ্যে কারও দৈহিক কোন দোষ থাকলে তারা অবশ্যই ঈশ্বরের কাছে বিশেষ রুটি বয়ে নিয়ে ইস্রায়েলেবে না| 18 কোন ব্যক্তি যার মধ্যে কিছু শারীরিক ত্রুটি আছে, অবশ্যই যাজক হিসেবে সেবা করতে পারবে না এবং আমার কাছে নৈবেদ্যসমূহ আনতে পারবে না| 19 অন্ধ কি খোঁড়া, কি মুখে খারাপ দাগ যুক্ত লোকেরা বা লম্বা হাত পা সহ লোকরা, 20 পিঠে কুঁজ থাকা লোকরা, কি বামনরা, ইস্রায়েলেদের চোখের দোষ আছে, ক্ষত আছে এমন লোকরা, খারাপ চর্মরোগযুক্ত লোকরা এবং ক্ষতিগ্রস্ত অণ্ডকোষ আছে এমন লোকরা যাজক হিসাবে সেবা করতে পারবে না| 21 হারোণের উত্তরপুরুষদের মধ্যে কারোর যদি কিছু দোষ থাকে, তাহলে সে প্রভুর কাছে আগুনের নৈবেদ্যসমূহ দিতে পারবে না| এবং সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের কাছে বিশেষ রুটি নিয়ে যেতে পারবে না| 22 সেই ব্যক্তি যাজকদের পরিবারের তাই সে পবিত্র রুটি আহার করতে পারে| সে অতি পবিত্র রুটিও খেতে পারে| 23 কিন্তু সে পর্দার ভেতর দিয়ে পবিত্রতম স্থানে যেতে পারবে না এবং বেদীর কাছে ইস্রায়েলেবে না কারণ তার মধ্যে কিছু দোষ আছে| সে আমার পবিত্র স্থানগুলিকে অবশ্যই অশুচি করবে না| আমি ঈশ্বর সেই সমস্ত স্থানসমুহকে পবিত্র করি|” 24 তারপর মোশি এই সমস্ত বিষয় হারোণ এবং হারোণের পুত্রদের এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের বলল|
1 প্রভু ঈশ্বর মোশিকে বললেন, 2 “হারোণ এবং তার পুত্রদের বলো: ইস্রায়েলের লোকরা আমাকে যে উপহার দেয় তা পবিত্র| যাজকরা যেন সেই উপহারগুলিকে অসম্মান না করে, কারণ তা তারা আমার উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করেছে| তা না হলে তোমরা যে আমার পবিত্র নামকে শ্রদ্ধা করো না সেটাই স্পষ্ট হবে| আমিই প্রভু| 3 এখন থেকে যদি তোমার উত্তরপুরুষদের মধ্যে থেকে কোন ব্যক্তি অশুচি অবস্থায় সেই সমস্ত জিনিস স্পর্শ করে, তাহলে সেই ব্যক্তি অবশ্যই আমার থেকে বিচ্ছিন্ন হবে| আমিই প্রভু! 4 “যদি হারোণের উত্তরপুরুষদের কারো কোন খারাপ চর্মরোগ থাকে বা যার নির্গমণ হয়েছে, সে পবিত্র না হওয়া পর্য়ন্ত পবিত্র খাদ্য খেতে পারবে না| ঐ নিয়ম যে কোন ইস্রায়েলেজকের পক্ষে প্রয়োজ্য় যে অশুচি থাকে| 5 মৃতদেহ দ্বারা অশুচি হয়েছে এমন কিছু যদি কেউ স্পর্শ করে অথবা যদি তার বীর্য়পাত হয় অথবা সে যদি বুকে হাঁটা অশুচি কোন প্রাণীকে স্পর্শ করে বা অশুচি কোন ব্যক্তিকে স্পর্শ করে যদি সে অশুচি হয় তবে কি করে সেই ব্যক্তি অশুচি হয়েছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয| 6 যে ব্যক্তি ঐ সমস্ত কিছুর যে কোন একটা স্পর্শ করে, সে সন্ধ্যা না হওয়া পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| সেই ব্যক্তি পবিত্র খাদ্যের কোন কিছু অবশ্যই খাবে না| এমন কি সে যদি জলে ধৌত হয়, তবু সে পবিত্র খাদ্য খেতে পারবে না| 7 কেবলমাত্র সূর্য় ডোবার পর সে শুচি হবে| তখন সে পবিত্র খাদ্য আহার করতে পারবে| কারণ সূর্য়াস্তের পর সে শুচি এবং সেই খাদ্য তারই জন্য| 8 “যদি একজন যাজক দেখে যে একটি প্রাণী নিজে নিজেই মারা গেছে বা বন্য প্রাণীদের দ্বারা নিহত হয়েছে, সে অবশ্যই সেই মৃত প্রাণীটিকে ভক্ষণ করবে না| যদি সেই ব্যক্তি সেই প্রাণীটিকে ভক্ষণ করে সে অশুচি হবে| আমিই প্রভু! 9 “আমাকে সেবা করার জন্য যাজকদের একা বিশেষ সময় থাকবে| তারা অবশ্যই সেইসব সময় বিষয়ে সতর্ক থাকবে| তারা পবিত্র জিনিসগুলিকে অপবিত্র না করার বিষয়ে অবশ্যই সাবধান হবে| যদি তারা সাবধান হয় তাহলে তারা মারা ইস্রায়েলেবে না| আমি ঈশ্বর এই বিশেষ কাজের জন্য তাদের পৃথক করেছি| 10 কেবলমাত্র যাজকদের পরিবারের লোকরাই পবিত্র খাদ্য আহার করতে পারে| ইস্রায়েলেজকের সঙ্গে বসবাসকারী একজন প্রবাসী অথবা একজন ভাড়াটে কর্মী অবশ্যই কোন পবিত্র খাদ্য খেতে পারে না| 11 কিন্তু যদি যাজক তার নিজের অর্থে একজন লোককে ভৃত্য হিসেবে কেনে, সেই ব্যক্তি তখন পবিত্র জিনিসগুলির কিছুটা আহার করতে পারে| ভৃত্যেরা, ইস্রায়েলেরা ইস্রায়েলেজকের বাড়ীতে জন্মায় তারাও ইস্রায়েলেজকের খাদ্যের কিছুটা খেতে পারে| 12 ইস্রায়েলেজকের কন্যা যাজক নয এমন কাউকে বিয়ে করলে পবিত্র নৈবেদ্যসমূহের কোন কিছু খেতে পারবে না| 13 ইস্রায়েলেজকের মেয়ে বিধবা হলে অথবা সে স্বামী পরিত্যক্তা হলে, যদি তাকে সাহায়্য় করার মত কোন সন্তানসন্ততি না থাকে এবং সে যেখানে বাল্যকাল কাটিযেছে সেই পিত্রালযে ফিরে আসে, তাহলে সে তার পিতার খাদ্য কিছুটা খেতেও পারে| তাছাড়া কেবলমাত্র ইস্রায়েলেজকের পরিবারের লোকরা এই খাদ্য খেতে পারবে| 14 “একজন মানুষ ভুল করে পবিত্র খাদ্যের কিছুটা খেতে পারে| সেই ব্যক্তি অবশ্যই সেই পরিমাণ খাদ্যের দাম যাজককে দেবে এবং সে অবশ্যই খাদ্যের দামের ওপর আরো পঞ্চমাংশ দেবে| 15 “ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে যে সব উপহার দান করে তা হবে পবিত্র; সুতরাং যাজক অবশ্যই সেই পবিত্র জিনিসগুলিকে অপবিত্র করবে না| 16 যদি যাজকরা সেই সমস্ত পবিত্র নৈবেদ্যগুলিকে অপবিত্র হিসেবে বিবেচনা করে এবং সেগুলি খায়, তাহলে তা পাপ হিসেবে ধরা হবে| আমি প্রভু তাদের পবিত্র করি|” 17 প্রভু ঈশ্বর মোশিকে বললেন, 18 “হারোণ এবং তার পুত্রদের এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের বলো: ইস্রায়েলের একজন নাগরিক বা একজন বিদেশী নৈবেদ্য নিয়ে আসতে পারে| হতে পারে লোকটি যে বিশেষ প্রতিজ্ঞা করেছিল সেই উপহার তার জন্য, অথবা কোন বিশেষ নৈবেদ্য লোকটি আনতে চেযেছিল| 19 ঐ উপহারগুলি লোকরা আনে কারন তারা সত্যিই ঈশ্বরকে উপহার দিতে চায়| কিন্তু কোন নৈবেদ্য ইস্রায়েলেতে কোন দোষ আছে তা তোমরা অবশ্যই গ্রহণ করবে না| আমি সেই উপহারে খুশী হবো না| যদি সেই উপহার একটি ষাঁড় অথবা একটি মেষ বা একটি ছাগল হয় তাহলে সেই প্রাণী অবশ্যই পুরুষ হবে এবং সেটার মধ্যে যেন দোষ না থাকে| 20 21 “মানত পূর্ণ করার জন্য অথবা স্বেচ্ছায যখন কোন ব্যক্তি প্রভুর কাছে মঙ্গল নৈবেদ্য আনে সেই নৈবেদ্য একটি ষাঁড় বা মেষ হতে পারে; কিন্তু সেটা যেন স্বাস্থ্য়বান হয়| সেই প্রাণীটির মধ্যে অবশ্যই যেন কোন দোষ না থাকে| 22 তোমরা অবশ্যই প্রভুকে এমন কোন প্রাণী দেবে না যেটা কানা, যার হাড়ভাঙ্গা বা পঙ্গু অথবা গলিত ঘা-যুক্ত বা খারাপ চর্মরোগ সমন্বিত| প্রভুর বেদীর ওপরকার আগুনের ওপর তোমরা অবশ্যই অসুস্থ প্রাণী দেবে না| 23 “কখনও কখনও একটি ষাঁড় বা একটি মেষশাবকের একটা পা থাকে ইস্রায়েলে খুব লম্বা অথবা একটা পাযের পাতা ইস্রায়েলে ঠিক মত গজায নি| যদি কোন ব্যক্তি সেই প্রাণীকে প্রভুর কাছে বিশেষ উপহার হিসেবে দিতে চায়, তাতে এটা গৃহীত হবে, কিন্তু এটা লোকটির বিশেষ প্রতিশ্রুতির অর্পণ হিসেবে গৃহীত হবে না| 24 “কোন প্রাণীর কালশিরে পড়া, চূর্ণ বা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অণ্ডকোষ থাকলে তা তোমরা প্রভুর প্রতি উত্সর্গ করবে না| 25 “তোমরা বিদেশীদের কাছ থেকে প্রভুর প্রতি নৈবেদ্য হিসাবে অবশ্যই কোন প্রাণী গ্রহণ করবে না, কারণ প্রাণীগুলি কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাদের মধ্যে কোন দোষ থাকতে পারে; তারা গৃহীত হবে না|” 26 প্রভু মোশিকে বললেন, 27 “যখন একটি বাছুর বা একটি মেষ অথবা একটি ছাগল জন্মাবে, সে অবশ্যই তার মাযের সঙ্গে সাত দিন থাকবে| তারপর আট দিনের দিন এবং পরে এই প্রাণী প্রভুর কাছে অগ্নি প্রদত্ত নৈবেদ্য হিসেবে গ্রহণ য়োগ্য় হবে| 28 কিন্তু তোমরা অবশ্যই প্রাণীটিকে এবং এর মাকে একই দিনে হত্যা করবে না! এই নিয়ম গাভী এবং মেষ উভয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য়| 29 যদি তোমরা কিছু বিশেষ ধরণের ধন্যবাদসূচক নৈবেদ্য প্রভুকে দিতে চাও, তাহলে তোমরা সেই উপহার দানের ব্যাপারে স্বাধীন| কিন্তু অবশ্যই তোমরা এটা এমনভাবে করবে ইস্রায়েলে ঈশ্বরকে খুশী করে| 30 তোমরা সেদিন অবশ্যই গোটা প্রাণীটিকে ভক্ষণ করবে| পরের দিনের সকালের জন্য অবশ্যই কোন মাংস ফেলে রাখবে না| আমিই প্রভু! 31 “আমার আদেশগুলি মনে রেখো এবং সেগুলি মান্য করো| আমিই প্রভু! 32 আমার পবিত্র নামকে তোমরা শ্রদ্ধা দেখাবে| ইস্রায়েলের লোকরা অবশ্যই যেন আমাকে তাদের পবিত্র প্রভু হিসেবে মান্য করে| আমিই প্রভু যিনি তোমাদের পবিত্র করেন| 33 আমি তোমাদের ঈশ্বর হবার জন্য মিশর থেকে এসেছি| আমিই প্রভু!
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: প্রভুর মনোনীত উত্সবগুলিকে তোমরা পবিত্র সভা বলে ঘোষণা কর| এইগুলি হল আমার নির্দিষ্ট ছুটির দিন: 3 “ছদিন ধরে কাজ কর, কিন্তু সপ্তম দিন কর্মবিরতির জন্য নির্দিষ্ট বিশ্রামপর্ব হবে বিশ্রামের বিশেষ দিন| তোমরা অবশ্যই কোন কাজ করবে না| এটা তোমাদের সকলের বাড়ীতেই প্রভুর জন্য বিশ্রামের দিন হবে| 4 “এগুলি হল প্রভুর মনোনীত নিস্তারপর্ব| তোমরা এগুলির জন্য মনোনীত সমযে পবিত্র সভার কথা ঘোষণা করবে| 5 প্রভুর নিস্তারপর্বের দিন হল প্রথম মাসের 14 দিনের দিন সূর্য়াস্তের সময়| 6 “খামিরবিহীন রুটির উত্সব হবে ঐ একই মাসের 15 দিনের দিন| তোমরা সাত দিন ধরে খামিরবিহীন রুটি খাবে| 7 এই ছুটির প্রথম দিনে তোমাদের এক বিশেষ সভা হবে| তোমরা অবশ্যই ঐ দিনটিতে কোন কাজ করবে না| 8 সাতদিন ধরে তোমরা প্রভুর কাছে অগ্নিপ্রদত্ত উত্সর্গগুলি আনবে| তারপর সপ্তমদিনে আর একটি পবিত্র সভা হবে| তোমরা অবশ্যই ঐ দিনে কোন কাজ করবে না|” 9 প্রভু মোশিকে বললেন, 10 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: আমি তোমাদের যে দেশ দেবো তাতে তোমরা প্রবেশ করবে| তোমরা এর শস্য ছেদন করলে শস্যের প্রথম আঁটি ইস্রায়েলেজকের কাছে আনবে| 11 যাজক প্রভুর সামনে সেই আঁটি দোলাবে যেন তোমাদের জন্য তা গ্রাহ্য হয়| যাজক রবিবার সকালে সেই শস্যের আঁটি দোলাবে| 12 “যে দিন তোমরা শস্যের আঁটি দোলাবে, সেদিন তোমরা একটি এক বছর বযসী পুরুষ মেষ উপহার দেবে| সেই মেষের মধ্যে যেন কোন দোষ না থাকে| ঐ মেষটি প্রভুর কাছে হোমবলির নৈবেদ্য হবে| 13 এছাড়া তোমরা অবশ্যই অলিভ তেল মেশানো 16কাপ মিহি ময়দা শস্য নৈবেদ্য হিসাবে দেবে| এর সাথে দেবে 1 কোযার্ট দ্রাক্ষারস| সেই নৈবেদ্যর গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 14 ঈশ্বরের কাছে তা নৈবেদ্য হিসাবে না আনা পর্য়ন্ত তোমরা অবশ্যই কোন নতুন শস্য অথবা ফল বা নতুন শস্য থেকে তৈরী রুটি খাবে না| তোমরা যেখানেই বাস কর না কেন এই বিধি তোমাদের বংশ পরম্পরায চলবে| 15 “সেই রবিবারের সকাল থেকে অর্থাত্ (দোলনীয় নৈবেদ্যর জন্য আনীত শস্যের আঁটি আনার দিন থেকে) সাত সপ্তাহ গুনে নাও| 16 সপ্তম সপ্তাহ পরে রবিবারে (অর্থাত্ 50 দিন পরে) তোমরা প্রভুর কাছে একটি নতুন শস্য নৈবেদ্য আনবে| 17 ঐ দিনে তোমাদের বাড়ী থেকে দুুকরো রুটি নিয়ে আসবে| ঐ রুটি দোলনীয় নৈবেদ্যর জন্য নির্দিষ্ট হবে| ঐ রুটি তৈরী করার জন্য খামির এবং 16 কাপ ময়দা ব্যবহার কর| এটাই হবে তোমাদের প্রথম শস্য থেকে প্রভুর কাছে দেওয়া উপহার| 18 “লোকরা শস্য নৈবেদ্যর সঙ্গে একটি ষাঁড়, একটি মেষ এবং সাতটি এক বছর বযস্ক পুরুষ মেষশাবক দেবে| ঐসব প্রাণীর মধ্যে অবশ্যই কোন দোষ থাকবে না| তারা প্রভুর কাছে হোমবলির নৈবেদ্য হবে| শস্য নৈবেদ্য ও পেয নৈবেদ্যর সাথে হবে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে অগ্নির দ্বারা প্রদত্ত নৈবেদ্য| এর গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 19 এ ছাড়াও তোমরা পাপার্থক নৈবেদ্যর জন্য একটি পুরুষ ছাগল এবং মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে দুটি এক বছর বযসী পুরুষ মেষশাবক আনবে| 20 “যাজক তাদের প্রথম শস্য থেকে তৈরী রুটি সহ দোলনীয় নৈবেদ্যর দুটি মেষশাবক প্রভুর সামনে দোলাবে| তারা প্রভুর কাছে পবিত্র| তারা থাকবে ইস্রায়েলেজকের অধিকারে| 21 ঐ একই দিনে তোমরা এক পবিত্র সভা ডাকবে| তোমরা অবশ্যই কোন কাজ করবে না| তোমাদের সকলের বাড়ীতে এই বিধি চিরকালের জন্য চলবে| 22 “উপরন্তু যখন তোমরা তোমাদের জমিতে শস্য বপন করবে, তখন তোমাদের ক্ষেতের কোণগুলির শস্য কাটবে না| মাটির ওপর পড়ে থাকা শস্য তোমরা তুলবে না| সেই জিনিসগুলি গরীবদের জন্য এবং তোমাদের দেশে ভ্রমণকারী বিদেশীদের জন্য রেখে দেবে| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর!” 23 প্রভু আবার মোশিকে বললেন, 24 “ইস্রায়েলের লোকদের বল: সপ্তম মাসের প্রথম দিন তোমরা বিশ্রামের বিশেষ দিন হিসেবে পালন করবে| সেই পবিত্র সভা লোকদের স্মরণ করানোর জন্য ভেরী বাজাবে| 25 সেদিন তোমরা অবশ্যই কোন কাজ করবে না এবং অগ্নি প্রদত্ত একটি নৈবেদ্য তোমরা প্রভুর কাছে আনবে|” 26 প্রভু মোশিকে বললেন, 27 “সপ্তম মাসের দশম দিনটি প্রাযশ্চিত্তের দিন, সেদিন এক পবিত্র সভা হবে| সেদিন তোমরা অবশ্যই কোন খাদ্য গ্রহণ করবে না এবং অগ্নিতে প্রদত্ত একটি নৈবেদ্য প্রভুর কাছে আনবে| 28 তোমরা অবশ্যই ঐ দিন কোন কাজ করবে না, কারণ এটা হল প্রাযশ্চিত্তের দিন| ঐ দিন যাজকরা প্রভুর কাছে ইস্রায়েলেবে এবং ইস্রায়েলে তোমাদের শুচি করে সেই সব আচারানুষ্ঠান করবে| 29 “এই দিন যদি কোন মানুষ উপবাস করতে অস্বীকার করে সে অবশ্যই তার লোকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হবে| 30 এই দিন যদি কোন ব্যক্তি কোন কাজ করে, আমি তার লোকদের মধ্যে সেই ব্যক্তিকে ধ্বংস করব| 31 সেদিন তোমরা অবশ্যই আদৌ কোন কাজ করবে না| তোমরা যেখানেই বসবাস করো না কেন, তোমাদের জন্য এটা হল চিরকালের বিধি| 32 এটা তোমাদের জন্য হবে বিশেষ বিশ্রামের দিন| তোমরা সেদিন অবশ্যই খাদ্য গ্রহণ করবে না| বিশ্রামের এই বিশেষ দিন তোমরা আরম্ভ করবে মাসের নবম দিনের সন্ধ্যায; এবং তা চলবে সেই সন্ধ্যা থেকে পরের দিনের সন্ধ্যা পর্য়ন্ত|” 33 প্রভু আবার মোশিকে বললেন, 34 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: সপ্তম মাসের 15 দিনের দিন হল কুটির উত্সব পালনের দিন| প্রভুর উদ্দেশ্যে এই উত্সব সাত দিন ধরে চলবে| 35 প্রথম দিনে একটি পবিত্র সভা হবে| তোমরা অবশ্যই সেদিন কোন কাজ করবে না| 36 সাতদিন ধরে তোমরা প্রভুর কাছে অগ্নিতে প্রস্তুত একটি করে নৈবেদ্য আনবে| আট দিনের দিন তোমাদের আর একটা পবিত্র সভা হবে| তোমরা প্রভুর কাছে অগ্নি দ্বারা প্রস্তুত একটি নৈবেদ্য আনবে| এটা হবে একটা পবিত্র সভা| তোমরা অবশ্যই সেদিন কোন কাজ করবে না| 37 “ঐগুলি হল প্রভুর পর্ব| ঐ সমস্ত পর্বের দিনগুলিতে পবিত্র সভা অনুষ্ঠিত হবে| তোমরা প্রভুর কাছে হোমবলি, শস্য নৈবেদ্যসমুহ, বলিগুলি এবং পেয নৈবেদ্যসমুহ আনবে| তোমরা ঠিক ঠিক দিনে ঐ সমস্ত উপহার আনবে| 38 ঐ সমস্ত পর্বের দিনগুলির সঙ্গে প্রভুর বিশ্রামের দিনগুলি স্মরণ করে তোমরা পালন করবে| এই সমস্ত নৈবেদ্যগুলি তোমরা প্রভুর কাছে যে বিশেষ নৈবেদ্য দিতে চাও এবং বিশেষ প্রতিশ্রুতির জন্য যে উপহার দিতে চাও তার সঙ্গে য়োগ হবে| 39 “সপ্তম মাসের 15 দিনে, যখন তোমরা জমির শস্য সংগ্রহ করবে তখন তোমরা সাতদিন ধরে প্রভুর উত্সব পালন করবে| তোমরা প্রথম দিন ও সপ্তম দিনে বিশ্রাম করবে| 40 প্রথম দিনটিতে তোমরা সুন্দর গাছগুলি থেকে ফল এবং নদীর তীরবর্তী তালগাছগুলির, ঝাউগাছগুলির এবং বাইসী গাছগুলির ডালগুলি নেবে| তোমরা সাতদিন ধরে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সামনে উত্সব করবে| 41 প্রতি বছরে সাত দিন ধরে তোমরা এই পর্ব প্রভুর জন্য পালন করবে| এই বিধি চিরকাল চলবে| সপ্তম মাসে তোমরা এই পর্ব পালন করবে| 42 তোমরা সাতদিন ধরে অস্থায়ী কুটিরে বসবাস করবে| ইস্রায়েলে জন্ম নেওয়া সমস্ত লোক ঐ সমস্ত আবাসে বাস করবে, 43 ইস্রায়েলেতে তোমাদের সমস্ত উত্তরপুরুষ জানে যে তাদের মিশর থেকে বের করে আনার সময় আমি ইস্রায়েলের লোকদের অস্থায়ী আবাসে বসবাসের ব্যবস্থা করেছিলাম| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর!” 44 সুতরাং মোশি ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর পর্বগুলির কথা বললেন|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের আজ্ঞা দাও নিঙড়ানো অলিভ থেকে খাঁটি তেল তোমার কাছে আনতে| সেই তেল লাগবে বাতিগুলির জন্য| যেন সবসময় সেগুলি জ্বলে| 3 হারোণ প্রভুর সামনে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্য়ন্ত সমাগম তাঁবুর মধ্যে বাতি বালিয়ে রাখবে| পর্দার বাইরে সাক্ষ্য সিন্দুকের সামনে সেই বাতিটি থাকবে| এই বিধি চিরকাল ধরে চলবে| 4 প্রভুর সামনে খাঁটি সোনার বাতিস্তম্ভের ওপর রাখা বাতিগুলিকে হারোণ নিয়মিত বালিয়ে রাখবে| 5 “মিহি ময়দা নাও এবং তা দিয়ে বারোটি রুটি সেঁকে নাও| প্রতি রুটির জন্য 16 কাপ করে ময়দা ব্যবহার কর| 6 প্রভুর সামনে সোনার টেবিলের ওপর সেগুলি দুটি সারিতে রাখো| প্রতি সারিতে থাকবে দুটি করে রুটি| 7 প্রতি সারিতে কুন্দুরু ঢালবে| এটা প্রভুর কাছে দেওয়া দগ্ধ নৈবেদ্য দানের স্মৃতি রক্ষায প্রভুকে সাহায়্য় করবে| 8 প্রতিটি শনিবারে নিয়মিতভাবে হারোণ প্রভুর সামনে রুটি সাজিযে রাখবে| ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে এই চুক্তি চিরকাল চলবে| 9 ঐ রুটি হারোণ এবং তার ছেলেদের অধিকারে থাকবে| তারা কোন পবিত্র জায়গায় ঐ রুটি খাবে, কারণ সেই রুটি প্রভুর প্রতি অগ্নিকৃত নৈবেদ্যসমুহের একটি| সেই রুটি চিরকালের জন্য হারোণের অংশ|” 10 একজন ইস্রায়েলীয় মহিলার একটি ছেলে ছিল, যার পিতা ছিল একদন মিশরীয| সেই ছেলে ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে গেল| এমন সময় তাঁবুর মধ্যে তার সাথে এক ইস্রায়েলের পুরুষের লড়াই শুরু হল| 11 ইস্রায়েলীয় স্ত্রীলোকের সন্তানটি প্রভুর নামে নিন্দা করে অভিশাপ দিতে শুরু করলে লোকরা তাকে মোশির কাছে নিয়ে এল| (ছেলেটির মাযের নাম ছিল শালোমীত্, দিব্রির মেয়ে, দান এর পরিবারগোষ্ঠী থেকে আগত|) 12 লোকরা ছেলেটিকে গ্রেফতার করে প্রভুর স্পষ্ট আদেশের জন্য অপেক্ষা করল| 13 “তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 14 “যে অভিশাপ দিয়েছিল তাকে তাঁবুর বাইরে নিয়ে এসো| ইস্রায়েলেরা তাকে অভিশাপ দিতে শুনেছিল, তারা তাদের হাত ছেলেটির মাথায় রাখবে, এবং তখন সমস্ত মানুষ তার দিকে পাথর ছুঁড়বে এবং তাকে হত্যা করবে| 15 ইস্রায়েলের লোকদের বলো: যদি কোন ব্যক্তি তার ঈশ্বরকে অভিশাপ দেয়, তাহলে সে অবশ্যই শাস্তি পাবে| 16 যে কোন ব্যক্তি প্রভুর নামের বিরুদ্ধে কথা বললে সে অবশ্যই নিহত হবে| সমস্ত মানুষ তাকে পাথর মারবে| ইস্রায়েলে জন্মগ্রহণ করা মানুষের মত বিদেশীরাও যদি ঈশ্বরের নামকে অভিশাপ দেয়, তাহলে সে অবশ্যই মৃত্যুমুখে পতিত হবে| 17 “যদি কোন ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে হত্যা করে তবে সে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে| 18 কোন ব্যক্তি যদি কারো পশু হত্যা করে তবে সে তার জায়গায় আর একটি পশু দেবে| 19 “কোন ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে আঘাত করলে ঠিক সেই ধরণের আঘাত দিয়ে লোকটিকে শাস্তি দিতে হবে| 20 ভাঙ্গা হাড়ের বদলে ভাঙ্গা হাড়; চোখের বদলে চোখ এবং দাঁতের বদলে দাঁত| লোকে অন্যকে যে ধরণের আঘাত দেয়, ঠিক সেই ধরণের আঘাত দিয়ে তাকে শাস্তি দিতে হবে| 21 সুতরাং যদি কোন ব্যক্তি এক প্রাণী হত্যা করে তাহলে ব্যক্তিকে অবশ্যই প্রাণীর জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে, তাহলে সে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে| 22 “বিদেশীদের জন্য এবং তোমাদের নিজের দেশের লোকদের জন্য একইরকম অনুশাসন হবে| কেন? কারণ আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর!” 23 তখন মোশি ইস্রায়েলের লোকদের বলল, যে লোকটা তাঁবুর বাইরের জায়গায় অভিশাপ দিচ্ছিল তাকে নিয়ে এসো| তারপর তারা লোকটাকে পাথর মেরে হত্যা করল| এইভাবে প্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন ইস্রায়েলের লোকরা সেই অনুসারেই কাজ করল|
1 সীনয় পর্বতে প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: আমি যে দেশ তোমাদের দিচ্ছি, সেখানে প্রবেশ করলে তোমরা জমিটিকে বিশ্রামের সময় দেবে| প্রভুকে সম্মান দেওয়ার জন্য এই বিশ্রামের সময় বিশেষ সময়| 3 তোমরা ছ’বছর ধরে তোমাদের জমিতে বীজ বপন করবে, তোমাদের দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলিতে গাছগুলিকে ছ’বছর ছাঁটবে এবং ফল নিয়ে আসবে| 4 কিন্তু সপ্তম বছরে প্রভুকে সম্মান জানানোর জন্য তোমরা জমিকে বিশ্রাম দেবে| এই সময় তোমরা তোমাদের ক্ষেতে বীজ বপন করবে না অথবা তোমাদের দ্রাক্ষা ক্ষেতে গাছগুলি ছাঁটবে না| 5 ফসল কাটার পর যে সমস্ত শস্য নিজেরাই জন্মেছে, তোমরা অবশ্যই তাদের কাটবে না| যে সমস্ত দ্রাক্ষালতা ছাঁটা হয়নি সেখান থেকে তোমরা অবশ্যই দ্রাক্ষা সংগ্রহ করবে না| জমি এক বছর বিশ্রামে থাকবে| 6 “কিন্তু জমি এক বছরের বিশ্রামে থাকাকালীন ইস্রায়েলে উত্পন্ন হবে তাতে তোমাদের জন্য, তোমাদের পুরুষ এবং মহিলা ভৃত্যদের খাবার জন্য প্রচুর খাদ্য থাকবে| তোমাদের জনখাটা ভাড়াটে শ্রমিকদের জন্য, তোমাদের দেশে বসবাস করা বিদেশীদের জন্য 7 এবং তোমাদের পশুদের ও তোমার দেশের বন্য পশুদের খাবার মত প্রচুর খাদ্য থাকবে| 8 “তোমরা সাত বছর সাত বার গণনা করবে| ঐ সমযের মধ্যে জমির জন্য থাকবে সাত বছরের বিরতি| এটা হবে 49 বছর| 9 তখন সপ্তম মাসের দশম দিনটিতে অর্থাত্ প্রাযশ্চিত্তের দিনে তোমরা অবশ্যই মেষের শিং বাজাবে, সারা দেশময় এই মেষের শিং বাজাবে| 10 তোমরা 50তম বছরকে একটি বিশেষ বছর গণ্য করবে| তোমাদের রাজ্য়ে বাস করা সমস্ত মানুষের জন্য তোমরা মুক্তি ঘোষণা করবে| এই সময়টিকে বলা হবে ‘জুবিলী’| তোমাদের প্রত্যেকে যে যার নিজস্ব সম্পত্তি ফিরে পাবে এবং তোমরা প্রত্যেকেই যে যার নিজের পরিবারে ফিরে ইস্রায়েলেবে| 11 তোমাদের পক্ষে 50তম বছরটি হবে জুবিলীর বছর| তোমরা বীজ বপন করবে না| যে সমস্ত শস্য নিজে নিজেই হবে, সেগুলি কাটবে না| যে সব দ্রাক্ষালতা ছাঁটা হয় না তাদের থেকে দ্রাক্ষা ফল সংগ্রহ করবে না| 12 ঐ বছরটা হল জুবিলী বছর| এটা তোমাদের পক্ষে পবিত্র সময়| যে সমস্ত শস্য ক্ষেত থেকে আসে, তোমরা সেগুলি আহার করবে| 13 জুবিলী বছরে প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের বিষয় আশয়ের মধ্যে ফিরে ইস্রায়েলেবে|” 14 “যখন তোমরা প্রতিবেশীর কাছে তোমাদের জমি বিক্রি করবে বা তাদের কাছ থেকে তা কিনবে তখন পরস্পরকে ঠকিও না| 15 যদি তোমরা তোমাদের প্রতিবেশীর জমি কিনতে চাও, তাহলে বিগত শেষ জুবিলী বছর থেকে বছরগুলো গুনে নাও এবং সঠিক মূল্য নির্ণযে সেই সংখ্য়াটি ব্যবহার কর| কারণ সে তোমার কাছে কেবলমাত্র পরের জুবিলী বছর আসা পর্য়ন্ত শস্য কাটার অধিকার বিক্রয় করেছে| 16 যদি পরের জুবিলী আসতে অনেক দেরী থাকে সেক্ষেত্রে দাম হবে অনেক বেশী| যদি বছরগুলি কম হয়, তাতে দাম কম হবে| কেন? কারণ তোমাদের প্রতিবেশী প্রকৃতপক্ষে, তোমার কাছে জুবিলীর যতগুলি বছর বাকি আছে ততগুলি ফসর বিক্রি করছে| পরবর্তী জুবিলী বছরে সেই জমি আবার তার পরিবারের অধিকারে ইস্রায়েলেবে| 17 তোমরা পরস্পর পরস্পরকে কখনও ঠকিও না| কিন্তু ঈশ্বরকে ভয করো| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! 18 “আমার বিধিসমূহ এবং নিয়মাবলী মনে রেখো, সেগুলি মান্য করো, তাহলে তোমরা নির্ভয়ে তোমাদের দেশে বাস করবে| 19 তোমাদের জন্য জমি ভাল শস্যের ফলন দেবে| তখন তোমাদের প্রচুর খাদ্য হবে এবং তোমরা দেশে নির্ভয়ে বাস করবে| 20 “কিন্তু হয়তো তোমরা বলবে, ‘যদি আমরা বীজ বপন না করি অথবা আমাদের শস্যসমূহ সংগ্রহ না করি, তাহলে সপ্তম বছরে খাবার মত আমাদের কিছুই থাকবে না|’ 21 শঙ্কিত হযো না| ষষ্ঠ বছরে আমি আমার আশীর্বাদ তোমাদের কাছে পাঠাবো| তিন বছর ধরে জমিতে শস্য জন্মাতে থাকবে| 22 অষ্টম বছরে রোপন করার সময়ও তোমাদের পুরানো শস্য খেযে শেষ হবে না| অষ্টম বছরে চাষ করা শস্য আসার আগে নবম বছরে পর্য়ন্ত তোমরা পুরানো শস্য খেতে পাবে| 23 “জমি আমার, তাই তোমরা স্থায়ীভাবে তা বিক্রি করতে পারো না| আমার জমিতে আমার সঙ্গে তোমরা কেবলমাত্র বিদেশী এবং ভ্রমণকারী হিসেবে বসবাস করছ| 24 বিক্রি হলেও জমির পুরানো মালিক যেন তা আবার কিনে নিতে পারে| এই প্রথা যেন দেশে থাকে| 25 তোমাদের দেশের কোন ব্যক্তি যদি খুব গরীব হয়ে ইস্রায়েলেয, সে এত বেশী গরীব যে সে তার সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে| সুতরাং সেক্ষেত্রে তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আসবে এবং তার আত্মীয়কে ফিরিযে দেবার জন্য সমস্ত সম্পত্তি কিনে নেবে| 26 কোন ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ এমন আত্মীয় নাও থাকতে পারে, কিন্তু সে যদি নিজের জমি পুনরায কিনে নেবার জন্য ধনবান হয়, 27 তাহলে সে অবশ্যই জমি বিক্রির সময় থেকে বছরগুলো গণনা করবে| জমির জন্য কত দিতে হবে তাতে সিদ্ধান্ত নিতে সেই সংখ্য়া কাজে লাগাবে| তারপর সে সেই জমি কিনে নিতে পারে| এরপর জমি আবার তার সম্পত্তি হবে| 28 কিন্তু যদি এই ব্যক্তি তার নিজের জন্য জমি ফেরত পেতে রয়োজনীয় অর্থ না জোগাড় করতে পারে, তাহলে সে ইস্রায়েলে বিক্রি করেছে তা জুবিলী বছর না আসা পর্য়ন্ত যে কিনেছিল তার হাতেই থাকবে| তারপর সেই জুবিলী বছরে জমি ফেরত ইস্রায়েলেবে প্রথম স্বত্ত্বাধিকারীর কাছে| সুতরাং সম্পত্তি আবার সঠিক পরিবারের অধিকারে ইস্রায়েলেবে| 29 “যদি কোন ব্যক্তি প্রাচীরে ঘেরা শহরের মধ্যে কোন বাড়ী বিক্রি করে, তাহলে তার বিক্রির পর একটি বছর পূর্ণ না হওয়া পর্য়ন্ত সেটা ফেরত পাওয়ার অধিকার তার আছে| এই অধিকার এক বছর পর্য়ন্ত থাকবে| 30 কিন্তু এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে যদি মালিক বাড়িটি কিনে ফেরত না দেয়, তাহলে প্রাচীরে ঘেরা শহরের বাড়িটি যে কিনেছিল, তা তার এবং তার উত্তরপুরুষদের অধিকারে থেকে ইস্রায়েলেবে| বাড়িটি জুবিলীর সময় প্রথম মালিকের কাছে ফেরত ইস্রায়েলেবে না| 31 চারপাশে প্রাচীর না দেওয়া ছোট শহর বা গ্রামগুলিকে খোলা মাঠের মত ধরা হবে| সুতরাং সেইসব ছোট শহরগুলিতে নির্মিত বাড়িগুলি জুবিলীর সময় প্রথম মালিকদের কাছে ফেরত ইস্রায়েলেবে| 32 “লেবীয়দের শহর সম্পর্কে; লেবীয় বংশধররা যে শহরগুলির অধিকারী, সেখানে তাদের বাড়ীগুলি যে কোন সমযে তারা কিনে ফেরত পেতে পারে| 33 কোন ব্যক্তি যদি একজন লেবী বংশধরের কাছ থেকে বাড়ী কেনে, তবে জুবিলী বছরে লেবীয়দের শহরের সেই বাড়ী আবার লেবীয় বংশধরদের কাছে ফিরে আসবে| কারণ ইস্রায়েলের মানুষের মধ্যে লেবীয়দের শহরের বাড়ীগুলি লেবীগোষ্ঠীর পরিবারের লোকদের অধিকারেই থাকে| 34 লেবীয়দের শহরসমুহ, ঘিরে রাখা মাঠসমুহ ও প্রান্তরসমুহ বিক্রয় করা ইস্রায়েলেবে না| ঐ মাঠগুলি লেবীয় বংশধরদের চিরকালের অধিকার| 35 “তোমাদের নিজেদের দেশের কোন এক ব্যক্তি যদি আর্থিকভাবে নিজের ভারবহন করার ব্যাপারে খুবই অক্ষম হয়ে পড়ে, তবে তোমরা অবশ্যই তাকে তোমাদের সঙ্গে একজন বিদেশী ও প্রবাসীর মত বসবাস করতে দেবে| 36 তাকে তোমরা ধার দিতে পারো এমন কোন অর্থের ওপর সুদ তার কাছ থেকে নিও না| তোমাদের ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা কর এবং তোমাদের ভাইকে তোমাদের সঙ্গে বাস করতে দাও| 37 তাকে ধার দিয়েছ এমন অর্থের উপর কোন সুদ তার কাছ থেকে লাভ করার চেষ্টা করো না| 38 আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর| কনান দেশ দেওয়ার জন্য এবং তোমাদের ঈশ্বর হওয়ার জন্য আমি তোমাদের মিশর দেশ থেকে এনেছিলাম| 39 “তোমাদের নিজেদের দেশের কোন ব্যক্তি যদি এত গরীব হয়ে পড়ে যে সে নিজেকে দাস হিসেবে তোমাদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য় হয়, তখন তোমরা অবশ্যই তাকে ভৃত্যের মত কাজে লাগাবে না| 40 জুবিলী বছর না আসা পর্য়ন্ত, সে তোমাদের কাছে জন খাটার কর্মী এবং একজন বিদেশীর মতো হবে| 41 তারপর সে তোমাদের ছেড়ে তার সন্তানসন্ততিদের নিয়ে নিজের পরিবারে এবং তার পূর্বপুরুষদের সম্পত্তিতে ফিরতে পারে| 42 কারণ তারা আমার দাস| আমি মিশরের দাসত্ব থেকে তাদের নিয়ে এসেছি| তারা অবশ্যই আবার দাস হবে না| 43 তোমরা এই ব্যক্তির একজন নির্দয প্রভু অবশ্যই হতে পারো না| তোমরা অবশ্যই তোমাদের ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করবে| 44 “তোমাদের চারপাশের অন্যান্য জাতিদের থেকে পুরুষ এবং নারী ভৃত্যদের তোমরা পেতে পারো| 45 তোমরা শিশুদেরও দাস হিসেবে নিতে পার যদি তারা তোমাদের দেশে বসবাসকারী বিদেশীদের পরিবারসমূহ থেকে আসে| সেইসব শিশু ভৃত্যরা তোমাদের অধিকারে থাকবে| 46 তোমরা এমনকি তোমাদের মৃত্যুর আগে এই সমস্ত বিদেশী দাসদের তোমাদের ছেলেমেয়েদের হেফাজতে দিয়ে যেতে পারো, ইস্রায়েলেতে তারা তোমাদের ছেলেমেয়েদের অধিকারে থাকে| তারা চিরকালের জন্য তোমাদের দাস হবে| তোমরা এইসব বিদেশীদের দাস বানাতে পারো; কিন্তু তোমরা অবশ্যই তোমাদের নিজেদের ভাইদের, ইস্রায়েলের লোকদের নির্দয মনিব হবে না| 47 “তোমাদের মধ্যে থেকে কোন বিদেশী বা দর্শনার্থী ধনী হতে পারে| অন্যদিকে তোমাদের দেশের এক ব্যক্তি গরীব হয়ে যেতে পারে এবং নিজেকে দাস হিসেবে তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশীর কাছে বা বিদেশীদের পরিবারের কোন সদস্যর কাছে নিজেকে বিক্রি করতে পারে| 48 সেই লোকটির অধিকার আছে ক্রযের মধ্যে দিয়ে ফিরে আসার এবং স্বাধীন হওয়ার| তার ভাইদের কোন একজন তাকে কিনে ফেরত পেতে পারে| 49 অথবা তার কাকা বা খুড়তুতো ভাই তাকে কিনে ফেরত পেতে পারে| অথবা তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের একজন তাকে কিনে ফেরত পেতে পারে| বা যদি লোকটি প্রচুর অর্থ পায, সে নিজে অর্থ শোধ করে আবার স্বাধীন হতে পারে| 50 “তোমরা কেমনভাবে মূল্য ইস্রায়েলেচাই করবে? বিদেশীর কাছে তার নিজেকে বিক্রি করার সমযের বছরগুলি থেকে পরের জুবিলী বছর পর্য়ন্ত তোমরা অবশ্যই গণনা করবে| মূল্য ঠিক করতে তোমরা সংখ্য়াটা ব্যবহার করবে| কারণ প্রকৃতপক্ষে লোকটি কযেক বছরের জন্য তাকে ‘ভাড়া’ করেছিল| 51 যদি কোন ক্ষেত্রে জুবিলী বছরের আগে আরও অনেক বছর থেকে ইস্রায়েলেয, তখন লোকটি মূল্যের মোটা অংশ অবশ্যই ফেরত দেবে| এটা নির্ভর করে বছরের সংখ্য়াসমুহের ওপর| 52 জুবিলী বছর আসার যদি কেবলমাত্র সামান্য কযেক বছর থাকে, তাহলে লোকটি অবশ্যই মূল মূল্যের সামান্য অংশ ফেরত্ দেবে| 53 কিন্তু সেই লোকটি প্রতি বছর বিদেশীর সঙ্গে ভাড়া করা লোকের মত বসবাস করবে| সেই লোকটির প্রতি বিদেশীকে নির্দয প্রভু হতে দিও না| 54 “সেই লোকটিকে মুক্ত করার জন্য যদি কেউই দাম দিতে না চায় তাহলেও জুবিলী বছরে সে স্বাধীন হবে| জুবিলী বছরে সে এবং তার সন্তানসন্ততিরা স্বাধীন হবে| 55 কারণ ইস্রায়েলের লোকরা আমার দাস| তারা আমার দাস যেহেতু আমি তাদের মিশরের দাসত্বের বাইরে নিয়ে এসেছি| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর!
1 “তোমাদের নিজেদের জন্য প্রতিমূর্ত্তি গড়বে না| তাদের প্রণাম করবার জন্যে তোমাদের দেশে মূর্ত্তি বা স্মৃতিফলকসমুহ গড়বে না| কেন? কারণ আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর! 2 আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনগুলি মনে রেখো এবং আমার পবিত্র স্থানকে সম্মান দিও| আমিই প্রভু! 3 “আমার বিধিসমুহ ও আজ্ঞাসমুহ মনে রেখো এবং তাদের মান্য করো| 4 যদি তোমরা আমার আজ্ঞাসমূহ মেনে চলো তাহলে যে সমযে বৃষ্টি আসা উচিত্, আমি সে সমযে তোমাদের বৃষ্টি দেবো| জমিতে শস্য উত্পন্ন হবে এবং মাঠের বৃক্ষগুলিতে ফল ধরবে| 5 দ্রাক্ষা ফলগুলি সংগ্রহ করার সময় না আসা পর্য়ন্ত তোমাদের শস্যাদি মাড়াই চলতে থাকবে এবং রোপণের সময় না আসা পর্য়ন্ত তোমাদের দ্রাক্ষা সংগ্রহ চলতে থাকবে| সুতরাং খাবার জন্য তোমাদের প্রচুর খাবার থাকবে এবং তোমরা নির্ভয়ে তোমাদের দেশে বাস করবে| 6 আমি তোমাদের দেশে শান্তি রাখবো| তোমরা শান্তিতে থাকবে| কোন মানুষ তোমাদের ভীত সন্ত্রস্ত করবে না| বিপজ্জনক প্রাণীদের তোমাদের দেশের বাইরে রাখবো| আর তোমাদের দেশে শত্রু সৈন্যরা আসবে না| 7 “তোমরা তোমাদের শত্রুদের তাড়া করে পরাজিত করবে এবং তরবারি দিয়ে তাদের হত্যা করবে| 8 তোমাদের পাঁচ জন তাদের 100 জনকে ধাওয়া করবে এবং 100 জন ধাওয়া করবে 10,000 জনকে| তোমরা তোমাদের শত্রুদের পরাজিত করবে এবং তোমাদের অস্ত্র দিয়ে তাদের হত্যা করবে| 9 “আর আমি তোমাদের প্রতি প্রসন্ন হব| আমি তোমাদের অনেক সন্তানসন্ততি দিয়ে আশীর্বাদ করব এবং তোমাদের সংখ্য়া বৃদ্ধি করব| আমি তোমাদের সঙ্গে আমার চুক্তি রক্ষা করবো| 10 এক বছরের বেশী সময় ধরে তোমরা তোমাদের জমা করা শস্য খাবে| তোমরা নতুন শস্যাদি ছেদন করবে, তারপর নতুন শস্যগুলি রাখার মত জাযজার জন্য পুরানো শস্যগুলিকে ফেলে দেবে| 11 “এছাড়াও আমি তোমাদের মধ্যে আমার পবিত্র শিবির বসাবো| আমি তোমাদের থেকে সরে ইস্রায়েলেবো না| 12 আমি তোমাদের সঙ্গে ওঠা বসা করব, তোমাদের ঈশ্বর হবো এবং তোমরা হবে আমার লোকজন| 13 আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর| তোমরা মিশরে দাস ছিলে, কিন্তু আমি তোমাদের মিশরের বাইরে এনেছি| দাস হয়ে তোমরা ভারী ওজনের জিনিস বইতে গিযে নুযে থাকতে, কিন্তু আমি তোমাদের কাঁধের য়োযালীর কাঠ ভেঙ্গে দিয়েছি| আমি তোমাদের আবার সোজা হয়ে হাঁবার সুয়োগ দিয়েছি| 14 “কিন্তু যদি তোমরা আমাকে এবং আমার সমস্ত আজ্ঞাগুলি মান্য না করো, তাহলে এই সমস্ত খারাপ ঘনাগুলো ঘটবে| 15 যদি তোমরা আমার বিধিসমুহ এবং আজ্ঞাগুলি মানতে অস্বীকার কর, তার অর্থ তোমরা আমার চুক্তি ভঙ্গ করেছো| 16 যদি তোমরা তা করো, সেক্ষেত্রে আমি ভযঙ্কর সব ঘনা ঘটাবো, আমি তোমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেব রোগ এবং জ্বর| সেগুলি তোমাদের চোখ নষ্ট করবে এবং তোমাদের প্রাণ নেবে| তোমরা বৃথাই বীজ বপন করবে, কারণ তোমাদের শত্রুরা তোমাদের শস্যসমুহ খেযে নেবে| 17 আমি তোমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াব, তাই তোমাদের শত্রুরা তোমাদের পরাজিত করবে| সেইসব শত্রুরা তোমাদের ঘৃণা করবে এবং শাসন করবে| এমন কি তোমাদের কেউ তাড়া না করলেও তোমরা পালাতে থাকবে| 18 “এই সমস্ত কিছুর পরও যদি তোমরা আমাকে মান্য না করো, তবে আমি তোমাদের পাপসমুহের জন্য সাতগুণ বেশী শাস্তি দেবো| 19 এবং ইস্রায়েলে তোমাদের গর্বিত করে সেই শহরগুলিকেও আমি ধ্বংস করে দেবো| আকাশ বৃষ্টি দেবে না এবং মাতিেও শস্য জন্মাবে না| 20 তোমরা কঠিন পরিশ্রম করবে, কিন্তু তাতে তোমাদের কোন সাহায়্য় হবে না| তোমাদের জমি কোন শস্য দেবে না এবং তোমাদের গাছগুলিতে ফল ফলবে না| 21 “যদি তা সত্ত্বেও তোমরা আমার বিরুদ্ধে ইস্রায়েলেও এবং আমাকে মান্য করতে অস্বীকার করো, আমি তোমাদের সাতগুণ কঠিন আঘাত করব| তোমরা যত পাপ করবে, তত শাস্তি পাবে| 22 আমি তোমাদের বিরুদ্ধে বুনো জন্তুদের পাঠাবো| তারা তোমাদের কাছ থেকে তোমাদের ছেলেমেয়েদের ছিনিয়ে নেবে, তোমাদের প্রাণীদের ধ্বংস করবে এবং তোমাদের অনেককে হত্যা করবে| লোকরা হাঁটাচলা করতে ভয পাবে - রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে ইস্রায়েলেবে| 23 ঐ সমস্ত কিছুর পরও তোমরা যদি উচিত্ শিক্ষা না পাও এবং তারপরও যদি আমার বিরুদ্ধাচারী হও, 24 তাহলে আমিও তোমাদের বিরুদ্ধে ইস্রায়েলেবো| আমি নিজে তোমাদের পাপসমুহের সাতগুণ শাস্তি দেব| 25 চুক্তিভঙ্গ করার শাস্তি দিতে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে সৈন্যদের পাঠাবো| তোমরা তোমাদের নিরাপত্তার জন্য শহরে ইস্রায়েলেবে; কিন্তু আমি তোমাদের মধ্যে মহামারী ছড়িয়ে দেব| এবং তোমাদের শত্রুরা তোমাদের পরাজিত করবে| 26 আমি তোমাদের খাদ্য য়োগানো বন্ধ করে দিলে একটি মাত্র উনুনে দশ জন মহিলা তাদের সমস্ত রুটি সেঁকতে পারবে| তারা তোমাদের মেপে খেতে দেবে তাই তোমরা আহার করবে কিন্তু তবু ক্ষুধার্ত থাকবে| 27 “তা সত্ত্বেও তোমরা যদি আমার কথা শুনতে অস্বীকার করো এবং যদি তবু আমার বিরুদ্ধাচারণ করো, 28 তাহলে আমি সত্যিই তোমাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হবো এবং তোমাদের পাপসমুহের জন্য সাতগুণ শাস্তি দেব| 29 তোমরা এত বেশী ক্ষুধার্ত হবে যে তোমরা তোমাদের ছেলেদের এবং মেয়েদের ভক্ষণ করবে| 30 আমি তোমাদের উচ্চ স্থানগুলিকেমূর্ত্তির স্থানসমুহকে ধ্বংস করব| আমি সুগন্ধী উত্সর্গ করার বেদীগুলি নষ্ট করে দেব| আমি তোমাদের মৃতদেহগুলিকে তোমাদের মূর্ত্তির ওপর ফেলে দেব| আমার কাছে তোমরা হবে নিদারুণ বিরক্তিকর| 31 আমি তোমাদের শহরগুলি ধ্বংস করব, তোমাদের পবিত্র স্থানগুলিকে ফাঁকা করে দেব| আমি তোমাদের নৈবেদ্যসমুহের সুগন্ধের গন্ধ আর নেবো না| 32 আমি তোমাদের দেশকে ফাঁকা করব এবং তোমাদের শত্রুরা ইস্রায়েলেরা সেখানে বসবাস করতে আসবে তারা তাই দেখে চমকে উঠবে| 33 আমি তোমাদের জাতিগুলির মধ্যে ছড়িয়ে দেব এবং আমি আমার তরোযাল বের করে তোমাদের ধ্বংস করব| তোমাদের দেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে এবং শহরগুলি উচ্ছন্নে ইস্রায়েলেবে| 34 “তোমরা তোমাদের শত্রুর দেশে আনীত হবে| তোমাদের দেশ হবে শূন্য, সুতরাং তোমাদের জমি নিয়ম অনুইস্রায়েলেযী তার বিশ্রাম পাবে| জমি তার বিশ্রাম সময়কে উপভোগ করবে| 35 বিধি অনুইস্রায়েলেযী প্রতি সাত বছরে জমি এক বছর বিরাম পাবে| জমি শূন্য থাকার সমযে বিরাম পাবে ইস্রায়েলে সেখানে তোমরা বাস করার সময় তাকে দাও নি| 36 প্রাণে বেঁচে ইস্রায়েলেওযা ব্যক্তিরাতাদের শত্রুর দেশে নিজেদের সাহস হারাবে| তারা প্রত্যেক বিষয়ে আতঙ্কিত হবে| বাতাসে নড়া পাতার শব্দই তাদের ছুটে পালানোর পক্ষে য়থেষ্ট হবে| তারা এমনভাবে দৌড়াতে থাকবে যেন কেউ তাদের তরবারি নিয়ে তাড়া করছে| এমন কি কেউ তাড়া না করলেও তারা উল্টে পড়বে| 37 কেউ পিছনে তাড়া না করলেও তরবারির ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে তারা একে অপরের গায়ে উল্টে পড়বে|“শত্রুদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো শক্তি তোমাদের হবে না| 38 অন্য দেশগুলির মধ্যে তোমরা হারিযে ইস্রায়েলেবে| তোমাদের শত্রুদের দেশে তোমরা মুছে ইস্রায়েলেবে| 39 প্রাণে বেঁচে ইস্রায়েলেওযা অবশিষ্ট লোকরা শত্রুদের রাজ্য়গুলিতে তাদের নিজেদের পাপে এবং পূর্বপুরুষদের পাপে ক্ষযে ইস্রায়েলেবে| 40 “কিন্তু হতে পারে লোকরা তাদের পাপসমুহ স্বীকার করবে এবং হয়তো তারা তাদের পূর্বপুরুষদের পাপসমুহকে স্বীকার করবে| তারা হয়তো স্বীকার করবে যে তারা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছিল এবং আমার বিরুদ্ধাচারী হয়ে পাপ করেছিল| 41 এবং তাই আমিও তাদের বিরুদ্ধে গিযেছিলাম এবং শত্রুদের তাদের রাজ্য়ে এনেছিলাম| এরপর যদি তারা নম্র হয় এবং তাদের পাপের জন্য দেওয়া শাস্তিকে গ্রহণ করে, 42 তাহলে ইস্রায়েলেকোবের সঙ্গে আমার করা সেই চুক্তিকে আমি স্মরণ করব| আমি ইস্হাকের সঙ্গে করা চুক্তিকে স্মরণ করব এবং অব্রাহামের সঙ্গে করা চুক্তিকে স্মরণ করব| আমি দেশকে স্মরণ করব| 43 “দেশ শূন্য হয়ে ইস্রায়েলেবে এবং ধ্বংসস্থান তার বিশ্রামের সময় উপভোগ করবে| তখন অবশিষ্ট জীবিতরা তাদের পাপের শাস্তিকে মেনে নেবে| তারা বুঝবে যে তারা আমার বিধিসমুহকে ঘৃণা করেছিল এবং আমার নিয়মাবলীকে মানতে অস্বীকার করেছিল বলে শাস্তি পেয়েছিল| 44 কিন্তু এর পরেও শত্রুদের দেশে থাকাকালীন তারা যদি আমার কাছে সাহায়্য়ের জন্য ফিরে আসে আমি তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিযে নেব না| আমি তাদের কথা শুনবো| আমি তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করব না| আমি তাদের সঙ্গে আমার চুক্তি ভঙ্গ করব না কারণ আমিই প্রভু তাদের ঈশ্বর| 45 তাদের ভালোর জন্যই আমি তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে করা চুক্তি স্মরণ করব| আমি অন্য জাতিদের সামনেই মিশর দেশ থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের এনেছিলাম, ইস্রায়েলেতে আমি তাদের ঈশ্বর হতে পারি| আমিই প্রভু|” 46 ঐগুলি হল বিধি, নিয়ম এবং শিক্ষামালা ইস্রায়েলে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের দিয়েছিলেন| প্রভু সীনয় পর্বতে ঐ বিধিগুলিকে দিয়েছিলেন এবং মোশি সেগুলি লোকদের জানিয়েছিল|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: এক ব্যক্তি প্রভুর কাছে বিশেষ মানত হিসাবে কোন ব্যক্তিকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে| ঐ লোকটি তখন বিশেষ পদ্ধতিতে প্রভুর সেবা করবে| ঐ লোকটির জন্য যাজক অবশ্যই মূল্য ঠিক করবে| ঐ লোককিে ফেরত পেতে হলে এই দাম দিতে হবে| 3 কুড়ি থেকে ষাট বছর বযসের মধ্যেকার একজন পুরুষের দাম রূপোর 50 শেকেল| (তোমরা অবশ্যই পবিত্র স্থানের মাপ অনুসারে রূপোর মাপ ব্যবহার করবে|) 4 একজন স্ত্রীলোকের মূল্য অর্থাত্ 20 থেকে 60 বছর বযসীর দাম 30 শেকেল| 5 পাঁচ থেকে কুড়ি বছর বযসী একজন স্ত্রীলোকের দাম 10 শেকেল| 6 একমাস থেকে পাঁচ বছর বযসী এক ছোট ছেলের দাম 5 শেকেল| একটি ছোট মেয়ের দাম হল 3 শেকেল| 7 ষাট বছরের বৃদ্ধ বা তার থেকে বেশী বযসের মানুষের দাম হল 15 শেকেল| একজন স্ত্রীলোকের মূল্য 10 শেকেল| 8 “যদি কোন মানুষ এত গরীব হয় যে দান দিতে অক্ষম, তাহলে সেই লোকটিকে ইস্রায়েলেজকের কাছে নিয়ে এসো| কত অর্থ লোকটিকে দিতে হবে, তা যাজক ঠিক করবে| 9 “যদি কোন ব্যক্তি তার পশুগুলির মধ্যে কোন একটিকে প্রভুর প্রতি উত্সর্গ হিসাবে নিয়ে আসে, তাহলে সেই ধরণের সব পশু হবে পবিত্র| 10 লোকটি প্রভুকে যে প্রাণীটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার জায়গায় অন্য প্রাণী যেন না রাখে, খারাপ পশুর জায়গায় একটা ভাল পশু দিয়ে বা ভাল পশুর জায়গায় একটা খারাপ পশু দিয়ে সে যেন বদলাবার চেষ্টা না করে| যদি এই ব্যক্তি প্রাণীসমূহ বদলের চেষ্টা করে, তাহলে দুটি প্রাণীই পবিত্র হবে| দুটি প্রাণী প্রভুর অধিকারে ইস্রায়েলেবে| 11 “অশুচি বলে যে সব প্রাণী ঈশ্বরের প্রতি নৈবেদ্য হিসেবে প্রদত্ত হতে পারে না, যদি কোন ব্যক্তি সেইসব অশুচি প্রাণীদের একটি প্রভুর কাছে আনে, তাহলে সেই প্রাণীটিকে অবশ্যই ইস্রায়েলেজকের কাছে আনতে হবে| 12 যাজক সেই প্রাণীটির জন্য একটি দাম নির্দিষ্ট করবে| প্রাণীটি ভাল বা মন্দ হোক্, তাতে কিছু আসে ইস্রায়েলেয না| যদি যাজক একটি মূল্য ঠিক করে তাতে সেটা হবে প্রাণীটির মূল্য| 13 যদি লোকটি প্রাণীটিকে কিনে ফেরত নিতে চায়, তাহলে সে অবশ্যই দামের পাঁচভাগের এক ভাগ ঐ দামের সঙ্গে য়োগ করবে| 14 “যদি কোন ব্যক্তি পবিত্র বিষয় হিসেবে তার বাড়ীটি প্রভুর প্রতি উত্সর্গ করে, তাহলে যাজক অবশ্যই তার দাম ঠিক করবে| বাড়ীটি ভালো বা খারাপ, তাতে কিছু ইস্রায়েলেয আসে না| যদি যাজক কোন দাম নির্দিষ্ট করে দেয় তাহলে তাই হবে বাড়ীটির দাম| 15 কিন্তু দাতা যদি তা ফেরত পেতে চায়, তাহলে সে অবশ্যই ঐ দামের ওপর দামের পাঁচ ভাগের একভাগ য়োগ করবে| তাতে বাড়ীটি লোকটির অধিকারে ইস্রায়েলেবে| 16 “যদি এক ব্যক্তি প্রভুর কাছে তার জমির অংশ উত্সর্গ করতে চায়, তবে ঐ জমির মূল্য নির্ভর করবে তা চাষ করতে কি পরিমাণ বীজের প্রযোজন হয় তার ওপর| প্রতি হোমারএক ঝুড়ি যবের বীজের জন্য এর মূল্য হবে রূপোর 50 শেকেল| 17 যদি ব্যক্তিটি জুবিলী বছরের মধ্যে তার জমি ঈশ্বরকে দেয়, তাহলে তার দাম যাজক ইস্রায়েলে ঠিক করবে তাই হবে| 18 কিন্তু যদি লোকটি জুবিলীর পরে দেয়, তাহলে যাজক অবশ্যই তার প্রকৃত দাম গণনা করবে| পরবর্তী জুবিলী পর্য়ন্ত বছরের সংখ্য়া গণনা করে দাম নির্ণয করতে সেই সংখ্য়া অবশ্যই ব্যবহার করবে| 19 যদি লোকটি তা কিনে ফেরত পেতে চায়, তাহলে সে ঐ দামের ওপর পাঁচ ভাগের এক ভাগ য়োগ করবে| তাহলে জমি আবার সেই ব্যক্তির অধিকারে ইস্রায়েলেবে| 20 যদি ব্যক্তিটি জমি কিনে ফেরত না নেয তবে তা যাজকদের দখলে থাকবে| যদি জমি অপর কাউকে বিক্রয় করা হয়, তাহলে প্রথম ব্যক্তি জমি কিনে ফেরত পেতে পারবে না| 21 যদি ব্যক্তিটি জমি কিনে ফেরত না নিয়ে থাকে, তাহলে জুবিলী বছরে জমিটি প্রভুর কাছে পবিত্র হয়ে থাকবে| এটা ইস্রায়েলেজকের কাছে চিরকালের জন্য থেকে ইস্রায়েলেবে| এটা হবে প্রভুর কাছে সম্পূর্ণরূপে প্রদত্ত জমির মত| 22 যদি কোন ব্যক্তি তার কেনা জমি প্রভুকে উত্সর্গ করে এবং যদি তা তার পারিবারিক সম্পত্তির অংশ না হয়, 23 তাহলে যাজক অবশ্যই জুবিলী বছর পর্য়ন্ত বছর গণনা করে জমির দাম ঠিক করবে| এই মূল্য সেই দিনই লোকটিকে দিতে হবে আর এই অর্থ প্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র| 24 জুবিলী বছরে যদি আদি মালিকের কাছে অর্থাত্ যে পরিবার জমির মালিক তার কাছে ফিরে ইস্রায়েলেবে| 25 তোমরা অবশ্যই সেই সব দাম মেটাতে পবিত্র স্থানের মাপ ব্যবহার করবে| সেই মাপে এক শেকেলের ওজন হল 20 গেরা| 26 “প্রথমজাত প্রাণী, সে গোরু বা মেষ হোক্ তাকে প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করার প্রযোজন নেই, কারণ তা তো প্রভুরই| 27 কিন্তু সেই প্রথমজাত প্রাণী একটি অপবিত্র প্রাণী হলে লোকটি অবশ্যই ঐ প্রাণীকে কিনে ফেরত নেবে| যাজক প্রাণীর দাম নির্দ্ধারণ করবে এবং ব্যক্তিটি অবশ্যই সেই দামের সঙ্গে দামের পাঁচ ভাগের এক ভাগ য়োগ করবে| যদি ব্যক্তিটি সেই প্রাণীটিকে কিনে ফেরত না দেয় তাহলে যাজক প্রাণীটির যে দাম নির্দিষ্ট করেছে সেই দামে অবশ্যই বিক্রয় করে দেবে| 28 “এক বিশেষ ধরণের উপহারআছে ইস্রায়েলে লোকরা প্রভুকে দেয়| সেই উপহার একমাত্র প্রভুর অধিকারেই থাকে| সেই উপহারকে কিনে নেওয়া বা বিক্রয় করা ইস্রায়েলেয না| সেই উপহার থাকে প্রভুর অধিকারে| সেই ধরণের উপহারের মধ্যে পড়ে মানুষ, প্রাণী এবং পারিবারিক সম্পত্তি থেকে আগত জমি| 29 “প্রভুর প্রতি বিশেষ ধরণের উপহার যদি কোন ব্যক্তি হয় তা হলে তাকে মুক্ত করা ইস্রায়েলেবে না| সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই নিহত হতে হবে| 30 “সমস্ত শস্যের দশমাংস প্রভুর অধিকারে থাকে| এর অর্থ হলো, জমি থেকে কেটে আনা শস্য এবং গাছ থেকে আনা ফল ফলাদি, এসবের দশমাংশ প্রভুর অধিকারভুক্ত| 31 সুতরাং যদি একজন লোক তার দশমাংশ ফেরত পেতে চায়, তবে সে অবশ্যই এর দামের পাঁচ ভাগের একভাগ য়োগ করবে এবং তারপর তা কিনে নেবে| 32 “যাজকরা প্রত্যেক ব্যক্তির গোরু বা মেষদের মধ্যে থেকে প্রতি দশটির জন্য একটি করে প্রাণী নেবে এবং তা হবে প্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র| 33 পছন্দ করা প্রাণীটি ভাল না খারাপ এই সব পরীক্ষা চলবে না এবং একটির পরিবর্তে অন্য প্রাণী দেওয়া ইস্রায়েলেবে না| যদি সে অন্য প্রাণী দিয়ে তা বদলাতে মনস্থ করে, তাহলে দুটি প্রাণীই প্রভুর অধিকারে থাকবে| ঐ প্রাণীকে কিনে নিতে পারবে না|” 34 এইগুলি ইস্রায়েলের লোকদের জন্য সীনয় পর্বত থেকে মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশসমুহ|
1 প্রভু সমাগম তাঁবুতে মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন| সেটা সীনয় মরুভূমিতে অবস্থিত ছিল| ইস্রায়েলের লোকরা মিশর ত্যাগ করার পর দ্বিতীয় বছরের দ্বিতীয় মাসের প্রথম দিনটিতে এই সাক্ষাত্ হয়েছিল| প্রভু মোশিকে বললেন: 2 ইস্রায়েলের সমস্ত লোকসংখ্যা গণনা করো| প্রত্যেক ব্যক্তির নামের সাথে তার পরিবার এবং তার পরিবারগোষ্ঠী তালিকা তৈরী করো| 3 তুমি এবং হারোণ ইস্রায়েলের পুরুষদের মধ্যে যাদের বয়স 20 বছর অথবা তার বেশী তাদের সকলকেই গণনা করবে| (এরাই সেইসব মানুষ যারা ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীতে কাজ করতে পারে|) তাদের গোষ্ঠী অনুযায়ীতালিকাভুক্ত করো| 4 প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠী থেকে একজন ব্যক্তি তোমাকে সাহায্য করবে| এই ব্যক্তিটিই হবে তার পরিবারগোষ্ঠীর সর্বময কর্তা| 5 এই নামগুলি হচ্ছে সেইসব লোকর যারা তোমার পাশে থাকবে এবং তোমাকে সাহায্য করবে:রূবেণের পরিবারগোষ্ঠী থেকে শদেযূরের পুত্র ইলীষূর; 6 শিমিয়োনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে সূরীশদ্দযের পুত্র শলুমীয়েল| 7 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী থেকে অম্মীনাদবের পুত্র নহশোন; 8 ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠী থেকে সূযারের পুত্র নথনেল| 9 সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে হেলোনের পুত্র ইলীয়াব; 10 য়োষেফের উত্তরপুরুষ ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী থেকে অম্মীহূদের পুত্র ইলীশামা;মনঃশির পরিবারগোষ্ঠী থেকে পদাহসূরের পুত্র গমলীযেল; 11 বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে গিদিযোনির পুত্র অবীদান; 12 দানের পরিবারগোষ্ঠী থেকে অম্মীশদ্দযের পুত্র অহীযেষর; 13 আশেরের পরিবারগোষ্ঠী থেকে অক্রণের পুত্র পগীযেল; 14 গাদের পরিবারগোষ্ঠী থেকে দ্য়ুযেলের পুত্র ইলীয়াসফ; 15 নপ্তালীর পরিবারগোষ্ঠী থেকে ঐননের পুত্র অহীরঃ|” 16 ওপরে উল্লিখিত ব্যক্তিরা তাদের গোষ্ঠীর নেতা| তাদের পরিবারগোষ্ঠীর সর্বময কর্তা হিসেবে লোকরা তাদেরই মনোনীত করেছিল| 17 যারা সর্বময কর্তা হিসেবে মনোনীত হয়েছিল, মোশি এবং হারোণ তাদেরই বেছে নিল| 18 এবং মোশি ও হারোণ ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের একসঙ্গে জড়ো করল| তখন লোকদের তাদের পরিবার এবং পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে তালিকাভুক্ত করা হল| 20 বছর অথবা তার বেশী বয়সের প্রত্যেক পুরুষের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছিল| 19 প্রভু যা আদেশ করেছিলেন মোশি ঠিক তাই করেছিল| লোকরা যখন সীনয় মরুভূমিতে ছিল মোশি তখনই তাদের গণনা করেছিল| 20 তারা রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল| (রূবেণ ছিলেন ইস্রায়েলের জ্যেষ্ঠ পুত্র|) 20 বছর বয়স্ক অথবা তার বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম তাদের পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 21 রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীতে মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 46,500 জন| 22 তারা শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠী গণনা করেছিল: 20 বছর বয়স্ক অথবা তার উর্দ্ধে সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম তাদের পরিবার এবং পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 23 শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 59,300 জন| 24 তারা যাদের পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল 20 বছর বয়স্ক অথবা তার উর্দ্ধে সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম তাদের পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 25 যাদের পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 45,650 জন| 26 তারা যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল| 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম তাদের পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 27 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 74,600 জন| 28 তারা ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল| 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম তাদের পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 29 ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 54,400 জন| 30 তারা সবুলূনের পরিবারগোষ্ঠী গণনা করেছিল| 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম নিজ নিজ পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 31 সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠী মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 57,400 জন| 32 তারা ইফ্রয়িমের গোষ্ঠীর গণনা করেছিল| (ইফ্রয়িম ছিলেন য়োষেফের পুত্র|) 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম নিজ নিজ পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 33 ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 40,500জন| 34 তারা মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল| (মনঃশি ছিলেন য়োষেফের অপর এক পুত্র|) 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম নিজ নিজ পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 35 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 32,200 জন| 36 তারা বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল| 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম নিজ নিজ পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 37 বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর মোট সংখ্যা ছিল 35,400 জন| 38 তারা দানের পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল| 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম নিজ নিজ পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 39 দানের পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 62,700 জন| 40 তারা আশের পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল| 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম নিজ নিজ পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 41 আশের পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 41,500 জন| 42 তারা নপ্তালির পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করেছিল| 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের সমস্ত পুরুষ যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম, তাদের প্রত্যেকের নাম নিজ নিজ পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 43 নপ্তালির পরিবারগোষ্ঠীর মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 53,400 জন| 44 মোশি, হারোণ এবং ইস্রায়েলের বারোজন সর্বময কর্তা এই লোকসংখ্যা গণনা করেছিল| (প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠীর থেকে একজন করে সর্বময কর্তা ছিলেন|) 45 তারা 20 বছর বয়স্ক অথবা তার চেয়ে বেশী বয়সের প্রত্যেক পুরুষের গণনা করেছিল, যারা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে সক্ষম| প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার পরিবার অনুসারেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| 46 তালিকায সর্বসাকুল্যে মোট পুরুষের সংখ্যা ছিল 6,03,550 জন| 47 ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের সঙ্গে লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীভুক্ত পরিবারদের গণনা করা হয় নি| 48 প্রভু মোশিকে বললেন: 49 “লেবির পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের গণনা করবে না অথবা ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করবে না| 50 লেবীয়দের চুক্তির পবিত্র তাঁবুর এবং তার সমস্ত জিনিসের দায়িত্ব রাখ| তারা অবশ্যই পবিত্র তাঁবুর সাথে তার সব জিনিসপত্র বহন করবে ও তার যত্ন নেবে এবং পবিত্র তাঁবুর চারপাশেই শিবির স্থাপন করবে| 51 যখনই পবিত্র তাঁবু স্থানান্তরিত হবে, লেবীয়রাই এটাকে স্থানান্তরিত করবে| যখনই বিরতির সময় পবিত্র তাঁবুর প্রতিষ্ঠা করা হবে তখন অবশ্যই লেবীয়রা এটিকে প্রতিষ্ঠা করবে| একমাত্র তারাই পবিত্র তাঁবুর রক্ষণাবেক্ষণ করবে| লেবীয় পরিবারগোষ্ঠী বহির্ভুত কোনো ব্যক্তি যদি তাঁবুর যত্নের ব্যাপারে সচেষ্ট হয়, তাহলে তার মৃত্যু অনিবার্য়| 52 ইস্রায়েলের লোকরা তাদের আলাদা গোষ্ঠীতে শিবির স্থাপন করবে| প্রত্যেক ব্যক্তি তার পারিবারিক পতাকার কাছাকাছি থাকবে| 53 লেবীয়রা চুক্তির পবিত্র তাঁবুর চারপাশে তাদের শিবির স্থাপন করবে| তাহলে ইস্রায়েলের জনগোষ্ঠীর প্রতি ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন না| তারা পবিত্র তাঁবুর দায়িত্বে থাকবে এবং তা পাহারা দেবে|” 54 সুতরাং প্রভু মোশিকে যা আদেশ করেছিলেন, ইস্রায়েলের লোকরা সেই অনুসারে সব কিছু করেছিল|
1 প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন: 2 “ইস্রায়েলীয়র সমাগম তাঁবুর চারপাশে কিছুটা দূরত্ব রেখে তাদের শিবির তৈরী করবে| প্রত্যেক ব্যক্তি তার গোষ্ঠীর নিজস্ব পতাকার কাছে শিবির স্থাপন করবে|” 3 “পূর্বদিকে, যে দিকে সূর্য়োদয হয়, সেদিকে থাকবে যিহূদার শিবিরের পতাকা| যিহূদার লোকরা এই পতাকার কাছেই শিবির স্থাপন করবে| অম্মীনাদবের পুত্র নহশোন হলেন যিহূদার লোকদের নেতা| 4 তার দলে পুরুষের সংখ্যা 74,600 জন| 5 “যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর ঠিক পরেই ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠী শিবির স্থাপন করবে| সূযারের পুত্র নথনেল ইষাখরের লোকদের নেতা| 6 তার দলে পুরুষের সংখ্যা ছিল 54,400 জন| 7 “যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর ঠিক পরেই সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠীও শিবির স্থাপন করবে| হেলোনের পুত্র ইলীয়াব সবূলূনের লোকদের নেতা| 8 তার দলে পুরুষের সংখ্যা 57,400 জন| 9 “যিহূদার শিবিরের মোট লোকসংখ্যা 1,86,400 জন| এদের বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীতে বিভক্ত করা হয়েছে| স্থানান্তরে ভ্রমণ করার সময় যিহূদার গোষ্ঠী প্রথমে অগ্রসর হবে| 10 “পবিত্র তাঁবুর দক্ষিণ দিকে রূবেণের শিবিরের পতাকা থাকবে| প্রত্যেক গোষ্ঠী তার পতাকার কাছে শিবির স্থাপন করবে| শদেযূরের পুত্র ইলীষুর হলেন রূবেণের লোকদের নেতা| 11 এই দলে পুরুষের সংখ্যা ছিল 46,500 জন| 12 “রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীর ঠিক পরেই শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠী শিবির স্থাপন করবে| সূরীশদ্দেযের পুত্র শলুমীযেল হলেন শিমিযোনের লোকদের নেতা| 13 এই দলে পুরুষের সংখ্যা ছিল 59,300 জন| 14 “রূবেণের লোকদের শিবিরের ঠিক পরেই গাদের পরিবারগোষ্ঠী শিবির স্থাপন করবে| দ্য়ুযেলের পুত্র ইলীয়াসফ হলেন গাদের লোকদের নেতা| 15 এই দলে পুরুষের সংখ্যা ছিল 45,650 জন| 16 “রূবেণের শিবিরের এই গোষ্ঠীগুলির মোট পুরুষের সংখ্যা 1,51,450 জন| স্থানান্তরে ভ্রমণকালে রূবেণের শিবিরের লোকরা দ্বিতীয় স্থানে থাকবে| 17 “ভ্রমণকালে লেবীয় লোকরা রূবেণের লোকদের ঠিক পরেই থাকবে| অন্যান্য শিবিরের মাঝখানে সমাগম তাঁবু তাদের সঙ্গেই থাকবে| এমনকি ভ্রমণের সময়ও লোকরা তাদের শিবিরগুলি একই ক্রমানুসারে স্থাপন করবে| প্রত্যেক ব্যক্তি তার পারিবারিক পতাকার কাছে থাকবে| 18 “ইফ্রয়িম শিবিরের পতাকা পশ্চিম দিকে থাকবে| ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী এই পতাকার কাছেই শিবির স্থাপন করবে| অম্মীহূদের পুত্র ইলীশামা হল ইফ্রয়িমের লোকদের নেতা| 19 এই দলে পুরুষের সংখ্যা 40,500 জন| 20 “ইফ্রয়িমের পরিবারের ঠিক পরেই মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী শিবির স্থাপন করবে| পদাহসূরের পুত্র গমলীযেল হলেন মনঃশি লোকদের নেতা| 21 এই দলে পুরুষের সংখ্যা ছিল 32,200 জন| 22 “ইফ্রয়িমের পরিবারের ঠিক পরেই বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীও শিবির স্থাপন করবে| গিদিযোনির পুত্র অবীদান হল বিন্যামীনের লোকদের দলপতি| 23 এই দলে পুরুষের সংখ্যা ছিল 35,400 জন| 24 “ইফ্রয়িমের শিবিরে সেনাদল হিসাবে যাদের গণনা করা হয়েছিল তাদের মোট পুরুষের সংখ্যা 1,08,100 জন| স্থানান্তরে ভ্রমণকালে এদের পরিবার তৃতীয় স্থানে থাকবে| 25 “দানের শিবিরের পতাকা তাঁবুর উত্তর দিকে থাকবে| দানের পরিবারগোষ্ঠী এই শিবিরেই থাকবে| অম্মীশদ্দযের পুত্র অহীযেষর হল দানের লোকদের নেতা| 26 এই গোষ্ঠীর পুরুষের সংখ্যা ছিল 62,700 জন| 27 “আশের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা দানের পরিবারগোষ্ঠীর ঠিক পরেই শিবির স্থাপন করবে| অক্রণের পুত্র পগীযেল হলেন আশেরের লোকদের নেতা| 28 এই দলে পুরুষের সংখ্যা ছিল 41,500 জন| 29 “নপ্তালির পরিবারগোষ্ঠী দানের গোষ্ঠীর ঠিক পরেই শিবির স্থাপন করবে| ঐননের পুত্র অহীরঃ হল নপ্তালির লোকদের নেতা| 30 এই দলে পুরুষের সংখ্যা ছিল 53,400 জন| 31 দানের শিবিরের মোট পুরুষের সংখ্যা 1,57,600 জন| স্থানান্তরে ভ্রমণকালে এরা সকলের শেষে থাকবে| প্রত্যেক ব্যক্তি তার পারিবারিক পতাকার সঙ্গে থাকবে|” 32 সুতরাং এরাই হল ইস্রায়েলের জনগণ| পরিবার অনুসারে তাদের গণনা করা হতো| শিবিরে গোষ্ঠী অনুসারে গণনাকৃত ইস্রায়েলের মোট পুরুষের সংখ্যা 6,03,550 জন| 33 মোশি প্রভুর কথা মান্য করল এবং ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের সঙ্গে লেবীয় লোকদের গণনা করল না| 34 প্রভু মোশিকে যা যা বলেছিলেন, ইস্রায়েলের লোকরা তার প্রত্যেকটিই পালন করেছিল| প্রত্যেক গোষ্ঠী তার নিজস্ব পতাকার কাছেই শিবির স্থাপন করত এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তার পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গেই যাত্রা করত|
1 এ হল হারোণ এবং মোশির পারিবারিক ইতিহাস, যে সময় সীনয় পর্বতের ওপর প্রভু মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন| 2 হারোণের চার পুত্র ছিল| নাদব ছিল জ্যেষ্ঠ পুত্র| বাকী তিনজন হল অবীহূ, ইলীয়াসর এবং ঈথামর| 3 এই চারজন পুত্রই যাজক হিসেবে মনোনীত হয়েছিল|যাজক হিসেবে প্রভুকে সেবা করার বিশেষ দায়িত্ব এদের দেওয়া হয়েছিল| 4 কিন্তু প্রভুকে সেবা করার সময় পাপ করার দরুণ নাদব এবং অবীহূর মৃত্যু হয়েছিল| উত্সর্গের সময় প্রভু যে আগুন ব্যবহার করার অনুমতি দেন নি তারা সেই আগুন ব্যবহার করেছিল| এই কারণেই সীনয় মরুভূমিতে নাদব এবং অবীহূযের মৃত্যু হয়েছিল| তাদের কোনো পুত্র ছিল না, এই কারণে ইলীয়াসর এবং ঈথামর তাদের স্থান নিয়েছিল এবং যাজক হিসেবে প্রভুর সেবা করেছিল| তাদের পিতা হারোণের জীবদ্দশাতেই এই সকল ঘটনা ঘটেছিল| 5 প্রভু মোশিকে বললেন, 6 “লেবীর পরিবারগোষ্ঠীকে নিয়ে এসো| তাদের সবাইকে যাজক হারোণের কাছে নিয়ে এসো| তারাই হারোণকে সাহায্য করবে| 7 সমাগম তাঁবুতে যখন হারোণ ঈশ্বরের সেবা করবে সেই সময় এই লেবীয়রা তাকে সাহায্য করবে| পবিত্র তাঁবুতে উপাসনা করতে আসা ইস্রায়েলীয়দের এই লেবীয়রা সাহায্য করবে| 8 ইস্রায়েলীয়রা সমাগম তাঁবুর প্রত্যেকটি জিনিস রক্ষা করবে, এটাই তাদের কর্তব্য| এই সকল দ্রব্যসামগ্রীর রক্ষার মধ্যে দিয়েই লেবীয়রা ইস্রায়েলীয়দের সাহায্য করবে| পবিত্র তাঁবুতে এটাই হবে তাদের উপাসনার পদ্ধতি| 9 “হারোণ এবং তার পুত্রদের কাছে লেবীয়দের দাও| ইস্রায়েলের লোকদের মধ্য থেকে একমাত্র লেবীয়দেরই হারোণ এবং তার পুত্রদের সাহায্য করার জন্য মনোনীত করা হয়েছে| 10 “যাজক হিসেবে হারোণ এবং তার পুত্রদের নিয়োগ করো| তারা অবশ্যই তাদের কর্তব্য পালন করবে এবং যাজক হিসেবে কাজ করবে| অন্য যে কোনো ব্যক্তি যদি পবিত্র দ্রব্যসামগ্রীর কাছাকাছি আসতে চেষ্টা করে তবে তাকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে|” 11 প্রভু মোশিকে আরও বললেন, 12 “আমি তোমাকে বলেছিলাম যে ইস্রায়েলের প্রত্যেক পরিবার তাদের জ্যেষ্ঠপুত্রকে অবশ্যই আমার কাছে দেবে কিন্তু এখন আমি লেবীয়দেরই আমার সেবা করার জন্য মনোনীত করছি, তারা আমারই হবে| সুতরাং ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের আর তাদের জ্যেষ্ঠপুত্রদের আমার কাছে উত্সর্গ করতে হবে না| 13 “মিশরের সমস্ত প্রথম জাতদের হত্যা করার সময় আমি ইস্রায়েলের সকল প্রথম জাতদের নিজের করে নিয়েছিলাম| জ্যেষ্ঠ সন্তানরা এবং প্রথম জাত পশুরা সকলেই আমার| কিন্তু এখন আমি তোমার জ্যেষ্ঠ সন্তানদের তোমার কাছে ফেরত দিচ্ছি এবং লেবীয়দের আমার জন্য তৈরী করছি| আমিই প্রভু|” 14 প্রভু আবার সীনযের মরুভূমিতে মোশির সঙ্গে কথা বললেন| প্রভু বললেন, 15 “লেবী গোষ্ঠীর প্রত্যেক পরিবার এবং পরিবারগোষ্ঠীর গণনা করো| এক মাস অথবা তার বেশী বয়স্ক প্রত্যেক পুরুষকে গণনা করবে|” 16 সুতরাং মোশি প্রভুর কথা পালন করল| সে তাদের সকলকে গণনা করল| 17 লেবীয়দের তিন পুত্র ছিল, তাদের নাম হল গের্শোন, কহাত্ এবং মরারি| 18 প্রত্যেক পুত্র বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীর নেতা ছিল|গের্শোনের পরিবারগোষ্ঠীতে ছিল: লিব্নি এবং শিমিযি| 19 কহাতের পরিবারগোষ্ঠীতে ছিল অম্রাম, য়িষ্হর, হিব্রোণ এবং উষীযেল| 20 মরারির পরিবারগোষ্ঠীতে ছিল মহলি এবং মুশি| সব পরিবার লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত ছিল| 21 গের্শোনের পরিবারের অন্তর্ভূক্ত ছিল লিব্নি এবং শিমিযির পরিবার| তারা গের্শোনের পরিবারগোষ্ঠীতে ছিল| 22 এই দুটি পরিবারগোষ্ঠীতে 7,500 জন পুরুষ এবং ছেলে ছিল যাদের বয়স এক মাসের বেশী| 23 গের্শোনের পরিবারগোষ্ঠী সমাগম তাঁবুর পিছনে পশ্চিম দিকে শিবির স্থাপন করেছিল| 24 গের্শোনীযদের পরিবারগোষ্ঠীর নেতা ছিল লাযেলের পুত্র ইলীয়াসফ| 25 সমাগম তাঁবুতে গের্শোনের লোকদের কাজ ছিল পবিত্র তাঁবু, বাইরের তাঁবু এবং আচ্ছাদনের দেখাশোনা করা| সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথের পর্দারও তারা যত্ন নিত| 26 তারা প্রাঙ্গনের পর্দার যত্ন নিত এবং প্রাঙ্গণের প্রবেশ পথের পর্দারও যত্ন নিত| পবিত্র তাঁবু এবং উপাসনা বেদীর চারপাশ ঘিরে এই প্রাঙ্গণটি ছিল| এবং তারা পর্দার জন্য ব্যবহার করা হত এমন দড়ি এবং অন্যান্য জিনিসপত্রেরও যত্ন নিত| 27 কহাতের পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ছিল অম্রাম, য়িষহর, হিব্রোণ এবং উষীযেলের পরিবার| তারা কহাতের পরিবারগোষ্ঠীতে ছিল| 28 এক মাস অথবা তার থেকে বেশী বয়স্ক 8,300 জন পুরুষএবং ছেলে এই পরিবারগোষ্ঠীতে ছিল| পবিত্র স্থানের দ্রব্যসামগ্রী দেখাশোনার দায়িত্ব কহাতের লোকদের ওপর ছিল| 29 কহাতের পরিবারগোষ্ঠীগুলিকে পবিত্র তাঁবুর দক্ষিণ দিকে স্থান দেওয়া হয়েছিল| এই স্থানেই তারা শিবির স্থাপন করেছিল| 30 উষীযেলের পুত্র ইলীষাফণ কহাতের পরিবারগোষ্ঠীর নেতা ছিল| 31 পবিত্র স্থানের পবিত্র সিন্দুক, টেবিল, বাতিস্তম্ভ, বেদীগুলি এবং পাত্র সকলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তাদের ওপর ছিল| পর্দা এবং পর্দার সঙ্গে ব্যবহারের উপযোগী অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রেরও যত্ন তারা নিত| 32 লেবীয়দের যারা নেতা ছিল, তাদের ওপর নেতৃত্ব দিত যাজক হারোণের পুত্র ইলীয়াসর| পবিত্র দ্রব্যসামগ্রীর যত্নের দায়িত্ব যাদের উপর ন্যস্ত ছিল, তাদের দেখাশোনার ভার ছিল ইলীয়াসরের ওপর| 33 মহলীয এবং মুশীয পরিবারগোষ্ঠী মরারি পরিবারের অংশ ছিল| মহলী এবং মুশী পরিবারগোষ্ঠীতে এক মাস অথবা তার বেশী বয়সের 6,200 জন পুরুষ এবং ছেলে ছিল| 34 35 অবীহযিলের পুত্র সূরীযেল ছিল মরারি পরিবারগোষ্ঠীর নেতা| এই পরিবারগোষ্ঠী পবিত্র তাঁবুর উত্তর দিকে শিবির স্থাপন করেছিল| 36 পবিত্র তাঁবুর কাঠামোর যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ মরারি পরিবারের লোকদের দেওয়া হয়েছিল| পবিত্র তাঁবুর কাঠামোর বন্ধনী, স্তম্ভ, ভিত্তি এবং কাঠামোর সঙ্গে ব্যবহৃত অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যত্নও তারা নিত| 37 পবিত্র তাঁবুর চারপাশ ঘিরে যে প্রাঙ্গণ তার সমস্ত স্তম্ভ তাঁবুর খুঁটিগুলি এবং দড়ির যত্নও তারা নিত| 38 সমাগম তাঁবুর সামনে অর্থাত্ পূর্বদিকে মোশি, হারোণ এবং তার পুত্ররা পবিত্র তাঁবু স্থাপন করেছিল| তারা ইস্রায়েলের লোকদের জন্য পবিত্র অঞ্চলটি রক্ষণাবেক্ষণ করত| অন্য যে কোনো ব্যক্তি পবিত্র স্থানের কাছে এসে তাকে হত্যা করা হত| 39 লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর সমস্ত পুরুষ এবং এক মাস অথবা তার বেশী বয়সের সব ছেলের সংখ্যা গণনা করার জন্য মোশি এবং হারোণকে ঈশ্বর আদেশ দিয়েছিলেন| তাদের মোট লোকসংখ্যা ছিল 22,000 জন| 40 প্রভু মোশিকে বললেন, “ইস্রায়েলের সকল প্রথমজাত পুরুষ এবং ছেলের সংখ্যা গণনা করে যাদের বয়স কমপক্ষে এক মাস, তাদের নাম তালিকাভুক্ত করো| 41 আমি প্রভু, আমার জন্য ইস্রায়েলের সকল প্রথমজাত ব্যক্তির পরিবর্তে লেবীয়দের গ্রহণ কর এবং ইস্রাযেল সন্তানদের প্রথমজাত পশুদের পরিবর্তে লেবীয়দের পশুদের গ্রহণ করো|” 42 সুতরাং মোশি প্রভুর আদেশানুযাযী ইস্রায়েলের জ্যেষ্ঠ সন্তানদের সংখ্যা গণনা করল| 43 সে এক মাস অথবা তার বেশী বয়সের সকল প্রথমজাত পুরুষ এবং ছেলের নাম তালিকাভুক্ত করল| সেই তালিকায 22,273 জনের নাম ছিল| 44 প্রভু মোশিকে আরও বললেন, 45 “ইস্রায়েলের অন্যান্য প্রথমজাত ব্যক্তিদের পরিবর্তে লেবীয়দের নাও এবং অন্যান্য লোকদের পশুদের পরিবর্তে লেবীয়দের পশুদেরই নাও| লেবীয়রা আমার, আমি প্রভু এই কথা বলেছি| 46 সেখানে 22,000 জন লেবীয় আছে কিন্তু অন্যান্য পরিবারের জ্যেষ্ঠ সন্তানদের সংখ্যা 2,273 জন অর্থাত্ লেবীয়দের থেকে ইস্রায়েলের আর অন্য পরিবারগুলিতে মোট 273 জন জ্যেষ্ঠ সন্তান বেশী আছে| 47 সুতরাং তাদের মুক্ত করতে ইস্রায়েলের লোকদের কাছ থেকে পবিত্র মন্দিরের অনুমোদিত ওজনের পরিমাপ অনুসারে 273 জনের প্রত্যেকের জন্য পাঁচ শেকেল রূপো সংগ্রহ করো| (পবিত্র স্থানের ওজনানুসারে এক শেকেল হলো 20 জিরোহ|) 48 সেই রূপো হারোণ এবং তার পুত্রদের দিয়ে দাও| ইস্রায়েলের 273 জন লোকর জন্য এই মূল্য দিতে হবে|” 49 অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর 273 জন পুরুষের বদলে জায়গা নেওয়ার মতো লেবীয়দের সংখ্যা য়থেষ্ট ছিল না| সুতরাং মোশি সেই 273 জনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করল| 50 ইস্রায়েলের প্রথমজাত ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোশি রূপো সংগ্রহ করল| সে পবিত্র স্থানের অনুমোদিত ওজন অনুসারে 1,365 শেকেল রূপো সংগ্রহ করেছিল| 51 মোশি প্রভুর আদেশ মতো হারোণ ও তার পুত্রদের সেই রূপো দিয়েছিল|
1 প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন, 2 “কহাত্ গোষ্ঠীর পরিবারগুলির লোকসংখ্যা গণনা করো| (কহাত্ পরিবারগোষ্ঠী লেবী পরিবারগোষ্ঠীরই একটি অংশ|) 3 ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়স্ক যে সব পুরুষ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিল তাদের সকলের সংখ্যা গণনা করো| এরা সমাগম তাঁবুতে কাজ করবে| 4 সমাগম তাঁবুর ভেতরের পবিত্রতম জিনিসপত্রের যত্ন ও রক্ষনাবেক্ষণই হবে তাদের কাজ| 5 “যখন ইস্রায়েলের লোকরা কোনো নতুন জায়গায় ভ্রমণে যাবে, তখন হারোণ এবং তার পুত্ররা অবশ্যই সমাগম তাঁবুতে যাবে এবং পর্দা নামিযে সেই পর্দা দিয়ে ঈশ্বর এবং ইস্রায়েলের লোকদের চুক্তির পবিত্র সিন্দুকটিকে ঢাকা দিয়ে রাখবে| 6 এর পর তারা এই সমস্ত জিনিসগুলিকে একটি মসৃণ চামড়ার তৈরী আচ্ছাদন দিয়ে ঢেকে দেবে| এর পর তারা অবশ্যই এই চামড়ার ওপর দিয়ে একটি শক্ত নীল কাপড় সমানভাবে বিছিযে দেবে এবং পবিত্র সিন্দুকের আংটার মধ্যে খুঁটিগুলো পরাবে| 7 “এর পর তারা অবশ্যই পবিত্র টেবিলের উপর একটি নীল কাপড় বিছিযে দেবে| তারপর তারা থালা, চামচ, বাটি এবং পেয় নৈবেদ্যগুলির পাত্র টেবিলের ওপর রাখবে| টেবিলের ওপরে বিশেষ ধরণের রুটিও রাখবে| 8 এই সমস্ত জিনিপত্রের উপরে তুমি অবশ্যই একটি লাল কাপড় বিছিযে দেবে| এর পর এই সমস্ত জিনিসগুলিকে মসৃণ চামড়া দিয়ে ঢেকে রাখো| এর পর টেবিলের আংটার মধ্যে খুঁটিগুলো পরাবে| 9 এর পর তারা অবশ্যই বাতিস্তম্ভ এবং তার বাতিগুলিকে একটি নীল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেবে| বাতিগুলোকে প্রজ্জ্বলিত অবস্থায় রাখার জন্য যা যা জিনিসপত্রের প্রযোজন হয়, সেই সমস্ত কিছুকে এবং বাতির জন্যে রয়োজনীয় তেলের পাত্রগুলোকেও তারা অবশ্যই ঢেকে রাখবে| 10 তারপর সমস্ত জিনিসগুলোকে মসৃণ চামড়ার মধ্যে মুড়বে| এর পর তারা অবশ্যই এই সমস্ত দ্রব্যসামগ্রীকে খুঁটিতে পরাবে, যে খুঁটিগুলো বহন করার জন্য ব্যবহৃত হত| 11 “তারা অবশ্যই সোনালী বেদীর ওপর একটি নীল কাপড় বিছিযে দেবে এবং সেটাকে একটি মসৃণ চামড়া দিয়ে আবৃত করবে| তারপর তারা বহনের জন্য বেদীর ওপরে আংটার মধ্যে খুঁটিগুলো পরাবে| 12 “এর পর তারা পবিত্র স্থানে উপাসনার জন্য যে সব বিশেষ ধরণের জিনিসপত্র ব্যবহৃত হয়, সেগুলিকে এক জায়গায় জড়ো করবে| একত্রিত জিনিসপত্রগুলিকে তারা অবশ্যই একটি নীল কাপড়ে মুড়বে| তারপর তারা ঐসব জিনিসগুলিকে মসৃণ চামড়া দিয়ে ঢাকবে| তারপর এগুলোকে বহনের জন্যে একটি কাঠামোর ওপর রাখবে| 13 “তারা অবশ্যই পিতলের বেদীর ওপর থেকে ছাই পরিষ্কার করবে এবং বেদীর ওপর একটি বেগুনী কাপড় পাতবে| 14 এরপর তারা উপাসনারর জন্য যে সব জিনিসপত্র ব্যবহৃত হত সেইগুলোকে বেদীর উপরে এক জায়গায় একত্রিত করবে| এগুলো হল আগুন রাখার পাত্র, কাঁটা চামচ, বেলচা এবং বাটি| তারা অবশ্যই এই সকল দ্রব্যসামগ্রী পিতলের বেদীর ওপর রাখবে| এরপর বেদীটি একটি মসৃণ চামড়ার আচ্ছাদন দিয়ে ঢাকবে| বেদীর উপরের আংটার মধ্যে দিয়ে তারা বহনের জন্য খুঁটিগুলোকে পরাবে| 15 “হারোণ এবং তার পুত্ররা পবিত্র স্থানের জিনিসপত্র ঢেকে দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ করবে| এরপর কহাত্ পরিবারের লোকরা ভিতরে যেতে পারবে এবং ঐ সব জিনিসপুত্র বহনের কাজ শুরু করবে| এইভাবে তারা পবিত্র স্থান স্পর্শ করবে না এবং তাদের মৃত্যু হবে না| 16 “যাজক হারোণের পুত্র ইলীয়াসর, পবিত্র তাঁবুর দায়িত্বে থাকবে| সেই পবিত্র স্থান এবং সেখানকার সকল জিনিসপত্রের দায়িত্ব তার| বাতি জ্বালাবার জন্য প্রয়োজনীয় তেল, ধূপধূনো, দৈনন্দিন উত্সর্গীকৃত জিনিসপত্র এবং অভিষেকের তেলের দায়িত্বেও সে থাকবে|” 17 এরপর প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন, 18 “সাবধান! এই কহাতের পরিবারের লোকদের উচ্ছেদ করো না| 19 তুমি নিশ্চয়ই এই কাজগুলো করবে যাতে কহাতের পরিবারের লোকরা পবিত্রতম স্থানের কাছে যেতে পারে এবং যাতে তাদের মৃত্যু না হয়| হারোণ ও তার পুত্ররা ভেতরে প্রবেশ করে কহাত্ পরিবারের প্রত্যেকটি লোককে তাদের কি করতে হবে এবং কি বইতে হবে তা দেখিয়ে দেবে| 20 যদি তুমি এই কাজ না করো, তাহলে কহাতের লোকরা হয়তো ভেতরে প্রবেশ করে পবিত্র দ্রব্যাদি দেখতে পারে| যদি তারা ক্ষণিকের জন্যেও ঐসব জিনিপত্র দেখে, তাহলে তাদের অবশ্যই মরতে হবে|” 21 প্রভু মোশিকে বললেন, 22 “গের্শোন পরিবারের সকল লোকর সংখ্যা গণনা করো| পরিবার এবং পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে তাদের তালিকাভুক্ত করো| 23 সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিল এমন 30 থেকে 50 বছর বয়স্ক পুরুষের সংখ্যা গণনা করো| সমাগম তাঁবুর রক্ষণাবেক্ষণই হবে তাদের কাজ| 24 “এগুলো গের্শোন পরিবারের কাজ| তারা এই সকল দ্রব্যাদি বহন করবে; 25 তারা সমাগম তাঁবুর পর্দাগুলো, পবিত্র তাঁবু এর আচ্ছাদন এবং মসৃণ চামড়ার আচ্ছাদনগুলোকে বহন করবে| তারা পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ পথের পর্দাও বহন করবে| 26 পবিত্র তাঁবু এবং বেদীর চতুর্দিকে যে প্রাঙ্গণ তার পর্দাগুলোকেও তারা বহন করবে| তারা প্রাঙ্গণের প্রবেশ পথের পর্দা এবং পর্দার সঙ্গে ব্যবহারের উপযোগী সমস্ত দড়ি এবং অন্যান্য জিনিসপত্রও বহন করবে| এই সকল জিনিসপত্রের সঙ্গে অন্যান্য যা যা কাজকর্মের প্রযোজন হবে তার দায়িত্বেও থাকবে গের্শোন পরিবারের লোকরা| 27 যে সকল কাজ করা হবে হারোণ এবং তার পুত্ররা তার প্রতি লক্ষ্য রাখবে| গের্শোনের লোকরা যে সব জিনিসপত্র বহন করবে এবং যে সব কাজ করবে, তার প্রত্যেকরি প্রতি হারোণ এবং তার পুত্ররা লক্ষ্য রাখবে| যে সব জিনিসপত্র তারা বহন করবে তার দায়িত্বও তুমি তাদের দেবে| 28 যাজক হারোণের পুত্র ঈথামরের নির্দেশ অনুসারে সমাগম তাঁবুর জন্য গের্শোন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা এই কাজগুলোই করবে|” 29 “মরারি পরিবারগোষ্ঠীর সকল পরিবার এবং পরিবারগোষ্ঠীর সকল পুরুষদের গণনা করো| 30 সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিল এমন 30 থেকে 50 বছরের বয়স্ক সব পুরুষের সংখ্যা গণনা করো| সমাগম তাঁবুর জন্য তারা এই বিশেষ ধরণের কাজ করবে| 31 যখন তুমি ভ্রমণ করবে তখন তাদের কাজ হল সমাগম তাঁবুর কাঠামো বহন করা| তারা অবশ্যই পবিত্র তাঁবুর বন্ধনী, স্তম্ভ এবং ভিত্তিগুলোকে বহন করবে| 32 প্রাঙ্গণের চারপাশের স্তম্ভগুলি, ভিত্তিগুলি, তাঁবুর খুঁটিগুলি, সমস্ত দড়ি এবং প্রাঙ্গণের চারপাশের খুঁটির জন্যে যা কিছু ব্যবহৃত হয় সব কিছু তারা অবশ্যই বহন করবে| নামের তালিকা তৈরী করে প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিশ্চিত করে বলে দাও তাকে কোন কোন জিনিস বহন করতে হবে| 33 সমাগম তাঁবুর কাজে সেবা করার জন্যেই মরারি পরিবারের লোকদের এই সব কাজ করতে হবে| যাজক হারোণের পুত্র ঈথামরের নির্দেশ অনুসারে এই কাজগুলি তারা করবে|” 34 মোশি, হারোণ এবং ইস্রায়েলের দলনেতারা কহাতের লোকদের তাদের পরিবার এবং পরিবারগোষ্ঠী অনুসারেই গণনা করেছিল| 35 ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়স্ক যেসব পুরুষ সমাগম তাঁবুতে বিশেষ কাজের দায়িত্বে ছিল তাদের সংখ্যা গণনা করেছিল| 36 কহাত্ পরিবারের 2,750 জন পুরুষ এই কাজের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছিল| 37 সুতরাং সমাগম তাঁবুর জন্য বিশেষ ধরণের কাজের দায়িত্ব কহাত্ পরিবারগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছিল| প্রভু মোশিকে যে ভাবে কাজ করতে বলেছিলেন, মোশি এবং হারোণ ঠিক সেই ভাবেই সেসব কাজ করেছিল| 38 গের্শোনের গোষ্ঠীকেও গণনা করা হয়েছিল| 39 সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিল এমন 30 থেকে 50 বছর বয়স্ক সব পুরুষকেই তারা গণনা করেছিল| তাদের সমাগম তাঁবুর জন্য বিশেষ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল| 40 গের্শোন পরিবারগোষ্ঠীর 2,630 জন পুরুষ এই কাজের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছিল| 41 সমাগম তাঁবুর জন্য বিশেষ কাজের দায়িত্ব গের্শোন পরিবারগোষ্ঠীর এইসব ব্যক্তির ওপরেই দেওয়া হয়েছিল| প্রভু মোশিকে যেভাবে কাজ করতে বলেছিলেন, মোশি এবং হারোণ ঠিক সেভাবেই সেসব কাজ করেছিল| 42 মরারি পরিবারগোষ্ঠীর সব পরিবার এবং গোষ্ঠীর পুরুষদের গণনা করা হয়েছিল| 43 সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিল এমন 30 থেকে 50 বছর বয়স্ক সকল পুরুষের সংখ্যাই গণনা করা হয়েছিল| তাদের সমাগম তাঁবুর জন্য বিশেষ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল| 44 মরারি পরিবারগোষ্ঠীর 3,200 জন পুরুষ এইসব কাজের জন্যে উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছিল| 45 সুতরাং মরারি পরিবারগোষ্ঠীর এইসব ব্যক্তির ওপরেই বিশেষ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল| প্রভু মোশিকে যে ভাবে কাজ করতে বলেছিলেন, মোশি এবং হারোণ ঠিক সেভাবেই কাজ করেছিল| 46 মোশি, হারোণ এবং ইস্রায়েলের অন্যান্য দলনেতারা লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর জনসংখ্যা গণনা করেছিল| তারা প্রত্যেক পরিবার এবং পরিবারগোষ্ঠীর লোকসংখ্যা গণনা করেছিল| 47 সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিল এমন 30 থেকে 50 বছর বয়স্ক সব পুরুষের সংখ্যাই গণনা করা হয়েছিল| তাদের সমাগম তাঁবুর জন্য বিশেষ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল| স্থানান্তরে ভ্রমণের সময় এরা সমাগম তাঁবু বহনের কাজ করেছিল| 48 মোট লোকসংখ্যা ছিল 8,580 জন| 49 সুতরাং প্রভু মোশিকে যেভাবে আদেশ করেছিলেন সেই ভাবে প্রত্যেক লোককে গণনা করা হয়েছিল| প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নিজের কাজ দেওয়া হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল তাকে অবশ্যই কোনো না কোন জিনিসপত্র বহন করতে হবে| প্রভু যেভাবে কাজ সম্পন্ন করার আদেশ দিয়েছিলেন সেই ভাবেই এইসব কাজ সম্পাদিত হয়েছিল|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “অসুস্থতা এবং রোগ থেকে তাদের শিবির মুক্ত রাখার জন্য আমি ইস্রায়েলের লোকদের আদেশ করছি| লোকদের বলো চর্মরোগ আছে এমন ব্যক্তিকে শিবির থেকে যেন বের করে দেওয়া হয়| যার শরীর থেকে কিছু বের হচ্ছে তাকে দূরে পাঠিয়ে দিতে বলো এবং তাদের বলে দাও মৃতদেহ স্পর্শ করেছে এমন যে কোনো ব্যক্তিকেও শিবির থেকে বের করে দিতে| 3 সে পুরুষই হোক অথবা স্ত্রী হোক তাতে কিছু আসে যায় না, তাকে শিবির থেকে বের করে দাও যাতে তাদের যে শিবিরের মধ্যে আমি বাস করি সেখানে অসুস্থতা এবং অশুদ্ধতা ছড়িয়ে না পড়ে|” 4 ইস্রায়েলের লোকরা ঈশ্বরের আদেশ পালন করেছিল| তারা সেই সমস্ত লোকদের শিবিরের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিল| প্রভু মোশিকে যা যা আদেশ দিয়েছিলেন তারা সেইগুলোই করেছিল| 5 প্রভু মোশিকে বললেন, 6 “ইস্রায়েলের লোকদের এ কথা বলে দাও: একজন ব্যক্তি হয়তো আরেকজন ব্যক্তির ক্ষতি করতে পারে| যখন কেউ অন্যদের কিছু ক্ষতি করে তখন সে আসলে ঈশ্বরের বিরুদ্ধেই পাপ কাজ করে| সেই ব্যক্তিটি অপরাধী| 7 সুতরাং সে তার নিজের পাপ স্বীকার করবে| সেই ব্যক্তিটি অবশ্যই তার ভুল কাজের জন্য পুরো খেসারত দিতে বাধ্য থাকবে| এছাড়াও সে তার খেসারতের এক পঞ্চমাংশ পরিমাণ মূল্য সেই ব্যক্তিকে দেবে, যার সে ক্ষতি করেছে| 8 কিন্তু হয়তো এমনও হতে পারে যে, সে যে ব্যক্তির ক্ষতি করেছে সে মারা গেছে এবং এমনও হতে পারে যে তার হয়ে খেসারতের মূল্য গ্রহণ করার মতো কোনো নিকট আত্মীয নেই| সে ক্ষেত্রে যে ব্যক্তিটি খারাপ কাজ করেছিল, সে প্রভুকে সেই মূল্য দেবে| সেই মূল্যের পুরোটাই তাকে যাজককে দিতে হবে| যাজক সেই মানুষকে শুচি করার জন্য অবশ্যই একটি পুং মেষ বলি দেবে| যে ব্যক্তি অন্যায কাজ করেছে, তার পাপকে ঢাকা দেওয়ার জন্যই এই মেষ বলি দেওয়া হবে| কিন্তু যাজক বাকী মূল্য রেখে দিতে পারে| 9 “যদি ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে কোনো একজন ঈশ্বরকে কোনো বিশেষ উপহার দেয, তাহলে যিনি সেই উপহার গ্রহণ করেছেন, সেই যাজক সেটি রেখে দিতে পারেন, এটি তাঁর 10 কোনো ব্যক্তির পক্ষে বিশেষ ধরণের উপহার দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়| কিন্তু যদি সে কোনো উপহার দেয তবে সেই উপহার যাজকের প্রাপ্য় হবে|” 11 এর পর প্রভু মোশিকে বললেন, 12 “ইস্রায়েলের লোকদের একথা বলে দাও: একজন পুরুষের স্ত্রী তার কাছে বিশ্বস্ত নাও হতে পারে| 13 অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে তার য়ৌন সম্পর্ক থাকতে পারে এবং এই ব্যাপারটি সে তার স্বামীর কাছে লুকোতে পারে| সে যে পাপ কাজ করছে সে সম্পর্কে তার স্বামীকে অবহিত করার জন্য সেখানে কেউ নাও থাকতে পারে| তার অন্যায কাজকর্ম সম্পর্কে তার স্বামী কোনোদিনই কোনো কিছুই নাও জানতে পারে এবং সেই স্ত্রীলোক তার পাপকর্ম সম্পর্কে তার স্বামীকে অবহিত নাও করতে পারে| 14 কিন্তু স্ত্রী যে পাপ কার্য় করে সেই ব্যাপারে স্বামী সন্দেহ করতে শুরু করতে পারে| সে ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠতে পারে| তার মনে এই বিশ্বাস হতে পারে যে তার স্ত্রী তার কাছে আর পবিত্র এবং সত্ নেই| 15 যদি তাই হয়, তাহলে সে অবশ্যই তার স্ত্রীকে যাজকের কাছে নিয়ে যাবে| সেই স্বামী অবশ্যই 8 কাপ য়বের মযদা নৈবেদ্য হিসাবে প্রদান করবে| সে সেই য়বের মযদার মধ্যে কোনো তেল বা ধূপধূনা দেবে না| কারণ এটি এক ঈর্ষান্বিত স্বামীর আনা শস্য নৈবেদ্য| এই নৈবেদ্য প্রদান ঐ স্ত্রীলোককিে তার দোষ স্মরণ করাবার জন্য| 16 “যাজক সেই স্ত্রীকে প্রভুর সামনে নিয়ে যাবে এবং সেখানে দাঁড় করিযে রাখবে| 17 এর পর যাজক পবিত্র জল নিয়ে আসবে এবং একটি মাটির পাত্রে তা রাখবে| যাজক পবিত্র তাঁবুর মেঝের থেকে কিছু ধুলো তুলে সেই জলে রাখবে| 18 তারপর যাজক ঐ স্ত্রীলোককে প্রভুর সামনে দাঁড় করাবে| এর পর যাজক সেই স্ত্রীর চুল আলগা করে দেবে এবং তার হাতে সেই নৈবেদ্য রাখবে| এই নৈবেদ্যটি সেই য়বের মযদা যা তার স্বামী ঈর্ষান্বিত হয়েছিল বলে এনেছিল| এই একই সমযে যাজকের হাতে সেই তিক্ত জল থাকবে যা অভিশাপ নিয়ে আসে| 19 “এর পর যাজক সেই স্ত্রীকে দিব্য করিযে বলবেন যে: ‘যদি তুমি অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে না শুয়ে থাকো এবং তুমি যদি তোমার বিবাহিত জীবনের সমযে স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো পাপ না করে থাকো তাহলে অভিশাপ বহনকারী এই তিক্ত জল তোমার কোনো ক্ষতি করবে না| 20 কিন্তু তুমি যদি তোমার স্বামী নয় এমন কোনোও পুরুষের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক করে তোমার স্বামীর বিরুদ্ধে য়ৌন পাপ করে থাক, তাহলে তুমি শুচি নও| 21 যদি তা সত্যি হয়, তাহলে এই বিশেষ জল পান করলে তোমাকে প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে| তুমি কোনো সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না| এবং তুমি যদি এখন সন্তানসম্ভবা হয়ে থাকো, তাহলে তোমার সন্তান মারা যাবে| তাহলে তোমার লোকরা তোমাকে ত্যাগ করবে এবং তোমার সম্পর্কে কু-কথা কথা বলবে|’“এর পর যাজক অবশ্যই সেই স্ত্রীকে প্রভুর কাছে এক বিশেষ প্রতিশ্রুতি করার জন্য বলবে| যদি স্ত্রী মিথ্য়ে কথা বলে তাহলে তার পক্ষে এই খারাপ ঘটনাগুলো যে ঘটবে সে ব্যাপারে তাকে অবশ্যই সম্মত হতে হবে| 22 যাজক অবশ্যই বলবে, ‘তুমি অবশ্যই এই জল পান করবে যা সমস্যার সৃষ্টি করে| যদি তুমি পাপ করে থাকো, তাহলে তুমি বন্ধ্যা হয়ে যাবে, আর যদি তুমি সন্তানসম্ভবা হও, তাহলে তোমার গর্ভের শিশু জন্মের আগেই মারা যাবে| এবং সেই স্ত্রী বলবে: ‘তুমি যা বলবে আমি সেই মতো কাজ করতে সম্মত হলাম|” 23 “যাজক তখন সেই অভিশাপগুলো একটি গোটানো পুঁথিতে লিখে রাখবে| এরপরে সে জল দিয়ে সেই বাণীগুলো ধুয়ে ফেলবে| 24 এরপর সেই স্ত্রীকে সেই জল পান করতে হবে যা সমস্যার সৃষ্টি করে| এই জল তার মধ্যে প্রবেশ করবে এবং যদি সে দোষী হয় তাহলে এটি তার পক্ষে খুবই যন্ত্রণাদাযক হবে| 25 “এরপর যাজক সেই স্ত্রীর কাছ থেকে যে নৈবেদ্য দেওয়া হয়েছিল সেটি নেবে (ঈর্ষার জন্য নৈবেদ্য) এবং প্রভুর সম্মুখে উপস্থাপিত করবে| এরপর যাজক সেটিকে বেদীর উপরে নিয়ে যাবে| 26 যাজক এক মুঠো শস্য নিয়ে সেটিকে বেদীর উপরে দগ্ধ করবে| এরপর সে সেই স্ত্রীকে জলপান করতে বলবে| 27 যদি সেই স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে য়ৌন পাপ করে থাকে, তাহলে এই জল তাকে বিপদে ফেলবে| জল তার শরীরে প্রবেশ করে তাকে প্রচুর যন্ত্রণা ভোগ করাবে| কোনো সন্তান যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলে জন্মের আগেই তার মৃত্যু হবে এবং স্ত্রীলোক আর কোনোদিনই কোনো সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না| সকলেই তার বিরুদ্ধাচারণ করবে| 28 কিন্তু সেই স্ত্রী যদি তার স্বামীর বিরুদ্ধে য়ৌন পাপ না করে থাকে এবং সে যদি শুচিই থেকে থাকে, সেক্ষেত্রে এই বিচার বলে দেবে যে সে দোষী নয়| তখনই সে স্বাভাবিক হবে এবং সন্তানের জন্ম দিতে পারবে| 29 “এটাই হল ঈর্ষা সংক্রান্ত বিধি যা নির্দেশ দেয কি করা উচিত্ যখন বিশেষ করে কোনো স্ত্রী তার সাথে বিবাহে আবদ্ধ স্বামীর বিরুদ্ধে পাপকর্মে লিপ্ত হয়| 30 অথবা একজন পুরুষের কি করা উচিত্ যদি সে তার স্ত্রীর প্রতি ঈর্ষান্বিত হয় এবং সন্দেহ করে যে তার স্ত্রী তার বিরুদ্ধে পাপকর্মে লিপ্ত হয়েছে| যাজক সেই স্ত্রীকে অবশ্যই প্রভুর সামনে দাঁড়ানোর জন্য বলবে| এরপরে যাজক ঐ সমস্ত কাজগুলি সম্পন্ন করবে| এটাই বিধি| 31 তাহলে কোনো রকম অন্যাযের জন্যে স্বামী দোষী হবে না| কিন্তু যদি স্ত্রী কোনো য়ৌন পাপ করে থাকে তাহলে তাকে কষ্টভোগ করতে হবে|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো: কোন পুরুষ বা স্ত্রী নাসরীয হবার জন্য অর্থাত্ প্রভুর জন্য নিজেকে পৃথক করে তবে, 3 ঐ সময় সেই ব্যক্তি যেন কোনো দ্রাক্ষারস বা অন্য কোনো কড়া পানীয় পান না করে| সেই ব্যক্তি দ্রাক্ষারস বা অন্য কোনো কড়া পানীয় থেকে তৈরী সিরকাও পান করবে না| এবং তাজা দ্রাক্ষা কিংবা কিশ্মিশ্ খাবে না| 4 আলাদা থাকার এই বিশেষ সময় দ্রাক্ষা থেকে তৈরী কোনো কিছুই সে খাবে না, এমনকি দ্রাক্ষার বীজ অথবা খোসাও নয়| 5 “নাসরীয হয়ে থাকার এই বিশেষ সমযে সেই ব্যক্তি তার চুলও কাটবে না| এই বিশেষ সময়টি শেষ না হওয়া পর্য়ন্ত সে অবশ্যই পবিত্র থাকবে| সে তার চুলকে বড় হতে দেবে| সেই ব্যক্তির চুল হচ্ছে ঈশ্বরের কাছে তার শপথের একটি বিশেষ অংশ| ঈশ্বরের কাছে উপহার হিসেবে সে তার চুল দান করবে| সুতরাং আলাদা থাকার এই বিশেষ সময়টি শেষ না হওয়া পর্য়ন্ত সেই ব্যক্তি তার চুল কাবে না, তাকে বাড়তে দেবে| 6 “পৃথক থাকার এই বিশেষ সময় একজন নাসরীয কোনো মৃতদেহের কাছে অবশ্যই যাবে না| কারণ, সেই ব্যক্তি প্রভুর কাছে নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করেছে| 7 এমনকি যদি তার নিজের পিতামাতা কিংবা ভাই অথবা বোন মারা যায়, তাহলেও সে অবশ্যই তাদের স্পর্শ করবে না| এটা তাকে অশুচি করে দেবে| তাকে অবশ্যই দেখাতে হবে যে, সে পৃথক এবং সম্পূর্ণভাবে সে নিজেকে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করেছে| 8 পৃথক থাকার এই পুরো সমযে সে অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে নিজেকে প্রভুর কাছে নিবেদন করবে| 9 “এও হতে পারে যে, নাসরীয এমন একজনের সঙ্গে আছে যে অকস্মাত্ মারা গেছে| যদি নাসরীয এই মৃত ব্যক্তিকে স্পর্শ করে তবে সে অপবিত্র হয়ে যাবে| যদি তাই হয়, তবে নাসরীয অবশ্যই মাথার সমস্ত চুল কেটে ফেলবে| (ঐ চুল তার বিশেষ প্রতিজ্ঞার একটি অংশ ছিল|) সে অবশ্যই সপ্তম দিনে তার চুল কাটবে, কারণ ঐ দিনে তাকে শুচি করা হবে| 10 এরপর অষ্টম দিনে সেই নাসরীয অবশ্যই দুটি ঘুঘু এবং দুটি পায়রার বাচ্চা যাজকের কাছে নিয়ে আসবে| সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথেই সে যাজকের কাছে এগুলিকে দিয়ে দেবে| 11 তখন যাজক এদের একটিকে পাপ থেকে শুচি হবার জন্য উত্সর্গ করবে| অপরটিকে সে দাহ করার জন্য উত্সর্গ করবে| এই দাহ করা উত্সর্গই হবে নাসরীযর পাপের প্রতিদান| (সে পাপী কারণ সে একটি মৃতদেহের কাছে ছিল|) ঐ সময় সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের কাছে উপহার হিসাবে তার মাথার চুল দেবার জন্য আবার শপথ করবে| 12 এর অর্থ হল, সেই ব্যক্তি আবার আলাদা থেকে ঈশ্বরের কাছে নিজেকে অবশ্যই সমর্পণ করবে| অবশ্যই সে একটি এক বছর বয়স্ক পুরুষ মেষ নিয়ে আসবে| এবং এই মেষ দোষার্থক বলি হিসাবে উত্সর্গ করবে| তার পৃথক থাকার প্রথম পর্য়াযকে গণনা করা হবে না| সে নতুন করে পৃথক থাকতে শুরু করবে| এটা অবশ্যই করতে হবে কারণ সে তার প্রথম পৃথক থাকার সময় একটি মৃতদেহ স্পর্শ করায অশুচি হয়েছিল| 13 “তার পৃথক থাকার নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পরে নাসরীয অবশ্যই সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে যাবে| 14 এবং প্রভুর কাছে তার যা কিছু উত্সর্গ করার তা করবে| তার উত্সর্গ অবশ্যই হবে:একটি নিখুঁত এক বছর বয়স্ক পুরুষ মেষশাবক যা হোমবলির জন্যে উত্সর্গ করা হবে| একটি নিখুঁত এক বছর বয়স্ক স্ত্রী মেষশাবক যা পাপার্থক বলির জন্য উত্সর্গ করা হবে| একটি নিখুঁত মেষ যা মঙ্গল নৈবেদ্যর জন্য উত্সর্গ করা হবে| 15 এক ঝুড়ি রুটি যা খামিরবিহীনভাবে তৈরী (তেলের সঙ্গে খুব ভালো মযদা মিলিযে তৈরী কেক|) এই সব কেকের ওপরে অবশ্যই তেল ছড়ানো থাকবে| এই সব উপহারের সঙ্গেই শস্য নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য উত্সর্গ করা হবে| 16 “যাজক এই সকল দ্রব্যসামগ্রী প্রভুর সামনে উপস্থিত করে তখনই পাপস্খালনের জন্যে বলি এবং হোমবলি উত্সর্গ করবেন| 17 যাজক খামিরবিহীন তৈরী এক ঝুড়ি রুটি প্রভুকে দেবেন| তারপর তিনি প্রভুর কাছে মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গের জন্য সেই পুং মেষটিকে হত্যা করবেন| যাজক এটিকে শস্য নৈবেদ্য ও পেয় নৈবেদ্যর সাথেই প্রভুকে উত্সর্গ করবেন| 18 “এরপর নাসরীয সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে যাবে| সেখানে সে তার এই উত্সর্গ করা চুল কেটে ফেলবে এবং যে আগুন মঙ্গল নৈবেদ্যর জন্য উত্সর্গীকৃত নৈবেদ্যর নীচে জ্বলছে তাতে সেই চুল ফেলে দেওয়া হবে| 19 “নাসরীয তার চুল কেটে ফেলার পরে যাজক তাকে পুং মেষের একটি সেদ্ধ করা স্কন্ধ, একটি পিঠে আর একটি সরুচাকলী ঝুড়ি থেকে দেবেন| এই দুটিই খামির ছাড়া তৈরী করা হবে| 20 এর পর যাজক এইসব দ্রব্যসামগ্রী প্রভুর সামনে দোলাবেন| এটি হল দোলনীয় নৈবেদ্য| এই সব দ্রব্যসামগ্রী পবিত্র এবং এগুলো সবই যাজকের| এছাড়াও মেষের বুক এবং উরুও প্রভুর সামনে দোলানো হবে| এই সব দ্রব্যসামগ্রীও যাজকের| এর পর নাসরীয ব্যক্তিটি দ্রাক্ষারস পান করতে পারে| 21 “যে ব্যক্তি নাসরীয শপথ করবে বলে মনস্থ করেছে তার জন্য ঐগুলোই হল নিয়ম| ঐ ব্যক্তি অবশ্যই প্রভুকে ঐসব উপহার দেবে| এছাড়াও যদি কোনো ব্যক্তি আরও কিছু বেশী দিতে সক্ষম হয় এবং তা দেবার জন্য শপথ করে থাকে, তাহলে তাকে অবশ্যই তার শপথ রাখতে হবে| তবে তাকে অবশ্যই কমপক্ষে ঐসব জিনিসপত্র দিতেই হবে যা নাসরীয শপথের নিয়মে তালিকাভুক্ত হয়েছে|” 22 প্রভু মোশিকে বললেন, 23 “হারোণ এবং তার পুত্রদের বলে দাও যে, এভাবেই তারা ইস্রায়েলের লোকদের আশীর্বাদ করবে| তারা বলবে: 24 প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন এবং রক্ষা করুন| 25 প্রভু তোমাদের প্রতি সদয হোন এবং তোমাদের করুণা প্রদর্শন করুন| 26 প্রভু তোমাদের প্রার্থনার উত্তর দিন এবং তোমাদের শান্তি দিন|” 27 এরপর প্রভু বললেন, “ইস্রায়েলের লোকদের আশীর্বাদ করার জন্য হারোণ এবং তার পুত্ররা আমার নাম ব্যবহার করবে এবং আমি তাদের আশীর্বাদ করবো|”
1 মোশি পবিত্র তাঁবুর স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করে এটিকে প্রভুর কাছে উত্সর্গ করল| পবিত্র তাঁবু এবং তার ভেতরের সমস্ত দ্রব্যসামগ্রীকে মোশি অভিষেক করল| বেদী এবং তার সঙ্গে ব্যবহার্য়্য় অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রীকেও মোশি অভিষেক ও পবিত্র করল| এতে বোঝানো হল যে, এই সব দ্রব্যসামগ্রী কেবলমাত্র প্রভুর উপাসনার জন্যই ব্যবহৃত হবে| 2 এরপর ইস্রায়েলের নেতাগণ প্রভুকে তাদের নৈবেদ্য প্রদান করল| এই সকল নেতারা ছিল তাদেরই পরিবারের কর্তা এবং তাদের গোষ্ঠীর নেতা| এই সব লোকরা হল তারাই যাদের লোকসংখ্যা গণনা করার দায়িত্ব ছিল| 3 এই সব লোকরা প্রভুর কাছে উপহার এনেছিল| তারা ছয়টি আচ্ছাদিত শকট এবং সেই শকটগুলিকে চালানোর জন্য বারোটি গরু এনেছিল| (প্রত্যেক নেতা একটি করে গরু দিয়েছিল| প্রত্যেক নেতা অপর আরেক নেতার সঙ্গে একসঙ্গে একটি করে শকট দিয়েছিল|) পবিত্র তাঁবুতেই নেতারা প্রভুকে এই সব দ্রব্যসামগ্রী দিয়েছিল| 4 প্রভু মোশিকে বললেন, 5 “নেতাদের কাছ থেকে এই সব উপহারসামগ্রী গ্রহণ করো| সমাগম তাঁবুর কাজে এইসব উপহারসামগ্রী ব্যবহার করা যাবে| লেবীয়দের এই সব জিনিসপত্র দিয়ে দাও| এই জিনিসগুলি তাদের প্রযোজন হবে|” 6 তাম্প মোশি শকটগুলি এবং গরুগুলোকে গ্রহণ করে ঐগুলো লেবীয় পরিবারভুক্তদের দিয়ে দিয়েছিল| 7 মোশি গের্শোন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের দুটি গাড়ী এবং চারটি গরু দিয়েছিল| 8 এরপর মোশি মরারি গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের চারটি গাড়ী এবং আটটি গরু দিয়েছিল| তাদের কাজের জন্য এই শকট ও গরুর তাদের প্রযোজন ছিল| যাজক হারোণের পুত্র ঈথামর এইসব ব্যক্তিদের কাজকর্মের জন্য দাযবদ্ধ ছিল| 9 মোশি কহাতের পরিবারগোষ্ঠীকে একটিও গরু অথবা গাড়ি দেয নি, কারণ তাদের কাজ ছিল পবিত্র দ্রব্যসামগ্রী নিজেদের কাঁধেই বহন করা| 10 মোশি বেদীকে অভিষেক করেছিল| ঐ একই দিনে বেদীটিকে উত্সর্গ করার জন্য নেতারা তাদের নৈবেদ্য নিয়ে এসেছিল| তারা বেদীতে প্রভুকে তাদের নৈবেদ্য প্রদান করেছিল| 11 প্রভু মোশিকে বললেন, “বেদীটিকে উত্সর্গ করার জন্যে প্রত্যেকদিন একজন করে নেতা তার উপহার নিয়ে আসবে|” 12 বারোজন নেতার প্রত্যেকে তাদের উপহার নিয়ে এসেছিল| এইগুলি হল উপহার সামগ্রী:প্রত্যেক নেতা 3-1/4 পাউণ্ড ওজনের একটি করে রূপোর থালা এবং 1-3/4 পাউণ্ড ওজনের একটি করে রূপোর বাটি এনেছিল| এই দুরকমের উপহারই পবিত্র স্থানের মাপকাঠি অনুসারে ওজন করা হয়েছিল| প্রত্যেকটি বাটি এবং থালা তেল মিশ্রিত সূক্ষ্ম মযদায পূর্ণ ছিল; এটি শস্য নৈবেদ্যর জন্য ব্যবহৃত হত| প্রত্যেক নেতা 4 আউন্স ওজনের একটি করে বড় সোনার চামচও এনেছিল| এই চামচগুলি সুগন্ধি ধূনোয পরিপূর্ণ ছিল| এছাড়াও তাঁরা প্রত্যেকে একটি করে এঁড়ে বাছুর, একটি মেষ এবং এক বছর বয়স্ক একটি পুং মেষশাবক এনেছিল| এই পশুগুলিকে হোমবলির জন্য আনা হয়েছিল| পাপ কর্মের উত্সর্গের জন্য তাঁরা প্রত্যেকে একটি করে পুরুষ ছাগল এনেছিল| প্রত্যেকে 2টি গরু, 5টি পুং মেষ, 5টি পুং ছাগল এবং এক বছর বয়স্ক 5টি পুং মেষশাবক এনেছিল| এই সকল দ্রব্যসামগ্রী মঙ্গল নৈবেদ্য হিসাবে উত্সর্গীকৃত হয়েছিল|প্রথম দিন, যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর নেতা অম্মীনাদবের পুত্র নহশোন তার উপহার এনেছিল|দ্বিতীয় দিন, ইষাখরের গোষ্ঠীর নেতা সূযারের পুত্র নথনেল তার উপহার এনেছিল|তৃতীয় দিন, সবূলূন পরিবারগোষ্ঠীর নেতা হেলোনের পুত্র ইলীয়াব তার উপহার এনেছিল|চতুর্থ দিন, রূবেণ গোষ্ঠীর নেতা শদেযূরের পুত্র ইলীষুর তার উপহার এনেছিল|পঞ্চম দিন, শিমিযোন গোষ্ঠীর নেতা সূরীশদ্দযের পুত্র শলুমীযেল তার উপহার এনেছিল|ষষ্ঠ দিন, গাদ গোষ্ঠীর নেতা দ্য়ুযেলের পুত্র ইলীয়াসফ তার উপহার এনেছিল|সপ্তম দিন, ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর নেতা অম্মীহূদের পুত্র ইলীশামা তার উপহার এনেছিল|অষ্টম দিন, মনঃশি গোষ্ঠীর নেতা পদাহসূরের পুত্র গমলীযেল তার উপহার এনেছিল|নবম দিন, বিন্যামীন গোষ্ঠীর নেতা গিদিযোনির পুত্র অবীদান তার উপহার এনেছিল|দশম দিন, দান গোষ্ঠীর নেতা অম্মীশদ্দযের পুত্র অহীযেষর তার উপহার এনেছিল|একাদশ দিন, আশের গোষ্ঠীর নেতা অক্রণের পুত্র পগীযেল তার উপহার এনেছিল|দ্বাদশ দিন, নপ্তালি গোষ্ঠীর নেতা ঐননের পুত্র অবীরাঃ তার উপহার এনেছিল| 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 সুতরাং ঐসব দ্রব্যসামগ্রী ছিল ইস্রায়েলের লোকদের নেতাদের কাছ থেকে পাওয়া উপহারসামগ্রী| মোশি বেদীটিকে অভিষেক করে উত্সর্গ করার সময় তারা এই সকল দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে এসেছিল| তারা 12টি রূপোর থালা, 12টি রূপোর বাটি এবং 12টি সোনার চামচ এনেছিল| 85 প্রত্যেকটি রূপোর থালা প্রায় 3-1/4 পাউণ্ড ওজনের ছিল| এবং প্রত্যেকটি বাটির ওজন ছিল প্রায় 1-3/4 পাউণ্ড| পবিত্র স্থানের মাপকাঠি অনুসারে সমস্ত রূপোর থালা এবং রূপোর বাটির মোট ওজন ছিল প্রায় 60 পাউণ্ড| 86 পবিত্র স্থানের মাপকাঠি অনুসারে সুগন্ধি ধূনোয পরিপূর্ণ 12 টি সোনার চামচের প্রত্যেকটির ওজন ছিল প্রায় 4 পাউণ্ড| 12টি সোনার চামচের মোট ওজন ছিল প্রায় 3 পাউণ্ড| 87 হোমবলি উত্সর্গের জন্য পশুর মোট সংখ্যা ছিল 12টি ষাঁড়, 12টি মেষ এবং 12টি এক বছর বয়স্ক পুরুষ মেষশাবক| ঐসব দ্রব্যসামগ্রীর উত্সর্গের সঙ্গে যে শস্য নৈবেদ্যর জন্য আবশ্যক, তাও ছিল এবং সেখানে 12টি পুরুষ ছাগলও ছিল যা প্রভুর কাছে পাপার্থক বলি হিসাবে উত্সর্গের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল| 88 এছাড়াও নেতারা মঙ্গল নৈবেদ্যর জন্য বলি হিসাবে উত্সর্গের জন্য পশুও দিয়েছিল| এই সব পশুদের মোট সংখ্যা ছিল 24টি ষাঁড়, 60টি মেষ, 60টি পুরুষ ছাগল এবং 60টি এক বছর বয়স্ক পুরুষ মেষশাবক| এই ভাবে মোশি অভিষেক করার পরে তারা বেদীটিকে উত্সর্গ করেছিল| 89 মোশি যখনই প্রভুর সাথে কথা বলার জন্য সমাগম তাঁবুতে যেত, সে প্রভুর কন্ঠস্বর শুনত, প্রভু তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন| সেই সাক্ষ্যসিন্দুকের বিশেষ আচ্ছাদনের ওপরের দুজন করূব দূতের মাঝখান থেকে সেই কন্ঠস্বর শোনা যেত| এই ভাবে ঈশ্বর মোশির সঙ্গে কথা বলতেন|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “হারোণকে বলো, সে বাতিগুলো জ্বালালে বাতিগুলোর আলোয যেন বাতিস্তম্ভের সামনের জায়গাটা আলোকিত হয়|” 3 হারোণ তাই করেছিল| সঠিক জায়গাতেই সে বাতিগুলো রেখেছিল এবং এমনভাবে রেখেছিল যে, বাতিস্তম্ভের সামনের জায়গাটা আলোকিত হয়েছিল| প্রভু মোশিকে যা আদেশ করেছিলেন তা মোশি পালন করেছিল| 4 এই ভাবে বাতিস্তম্ভটি তৈরী করা হয়েছিল| এটি পিটানো সোনা দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল, বাতিস্তম্ভের গোড়ার সোনার ভিত থেকে উপরের সোনার ফুল পর্য়ন্ত পুরোটাই| প্রভু মোশিকে ঠিক যেরকম দেখিয়েছিলেন এটি সেরকমই দেখতে হয়েছিলো| 5 প্রভু মোশিকে বললেন, 6 “ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের থেকে লেবীয়দের পৃথক করো| সেই লেবীয়দের শুচি করো| 7 তাদের শুচি করার জন্য তোমার যা যা করা উচিত্ তা এই রকম: পাপার্থক বলির জন্য যে বিশেষ জল আছে সেটা তাদের ওপর ছিটিয়ে দাও| এই জল তাদের শুচি করবে| এরপর তারা তাদের শরীর কামিযে পরিষ্কার করবে, বস্ত্রাদি ধোবে এবং শরীরকে পরিষ্কার করবে| 8 “তারপর লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা পালের মধ্যে থেকে একটি অল্পবয়স্ক ষাঁড় নেবে যার সঙ্গেই শস্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করা হবে| নৈবেদ্যর উদ্দেশ্যে এই শস্য হবে তেল মেশানো মযদা| এরপর পাপার্থক বলি উত্সর্গের প্রযোজনে তুমি আরও একটি অল্পবয়স্ক ষাঁড় নেবে| 9 সমাগম তাঁবুর সামনের এলাকায লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের একসঙ্গে ঐ জায়গায় নিয়ে এসো| 10 প্রভুর সামনে লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের নিয়ে এলে ইস্রায়েলের লোকরা তাদের হাত লেবীয়দের ওপরে রাখবে| 11 এরপর হারোণ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের ইস্রাযেল সন্তানদের কাছ থেকে প্রভুর কাছে আনা বিশেষ উপহার হিসাবে দিয়ে দেবে| এই ভাবে লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা প্রভুর উদ্দেশ্যে তাদের বিশেষ কাজ করার জন্য প্রস্তুত হবে| 12 “এরপর লেবীয়রা ষাঁড়ের মাথায় হাত রাখবে, তার মধ্যে একটি ষাঁড় পাপার্থক বলি হিসাবে এবং অন্যটি হোমবলি হিসাবে প্রভুর কাছে উত্সর্গ করার জন্য ব্যবহার করা হবে| এইসব উত্সর্গ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের পবিত্র করবে| 13 লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের হারোণ এবং তার পুত্রদের সামনে দাঁড়াতে বলো| এরপর প্রভুর কাছে লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের দিয়ে দাও| তারা দোলনীয় নৈবেদ্যর মতো হবে| 14 তুমি লেবীয়দের ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের থেকে পৃথক করবে| লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা আমার হবে| 15 “সুতরাং লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের শুচি করো এবং তাদেরকে প্রভুর কাছে দিয়ে দাও| তারা দোলনীয় নৈবেদ্যর মতো হবে| তুমি এটা করার পরে তারা সমাগম তাঁবুতে তাদের নির্ধারিত কাজ করতে পারবে| 16 ইস্রায়েলীয় লোকরা লেবীয়র গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের আমার কাছে দিয়ে দেবে| তারা আমার হবে| অতীতে আমি প্রত্যেক ইস্রায়েলীয় পরিবারকে তাদের প্রথমজাত পুত্র আমাকে দিয়ে দিতে বলেছিলাম| কিন্তু এখন আমি ইস্রায়েলের অন্যান্য পরিবারের প্রথমজাত পুত্রদের পরিবর্তে লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের নিচ্ছি| 17 ইস্রায়েলের প্রত্যেক পুংলিঙ্গধারী প্রথমজাত আমার| সেটি মানুষ হোক্ অথবা পশু, তাতে কিছু যায় আসে না, সেটি আমারই| কারণ যেদিন আমি মিশরের সমস্ত প্রথমজাত পুত্র এবং পশুদের হত্যা করেছিলাম, আমি আমার জন্য প্রথমজাত পুত্রদের বাছাই করেছিলাম| 18 কিন্তু এখন আমি তাদের পরিবর্তে লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদেরই নেব| 19 ইস্রায়েলের সকল লোকদের থেকে আমি লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বেছে নিয়েছিলাম| এবং আমি তাদের হারোণ এবং তার পুত্রদের কাছে উপহার হিসেবে দেব| আমি চাই সমাগম তাঁবুতে তারা কাজ করুক| তারা ইস্রায়েলের সমস্ত লোকর জন্যে সেবাকার্য় করবে| তারা তাদের শুদ্ধিকরণের বলি উত্সর্গ করতে সাহায্য করবে যা ইস্রায়েলের লোকদের শুচি করবে| তাহলে ইস্রায়েলের লোকরা পবিত্র স্থানের কাছাকাছি এলেও তারা কোনো বড় রকমের অসুস্থতা বা সমস্যার সম্মুখীন হবে না|” 20 সুতরাং মোশি, হারোণ এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোক প্রভুর আদেশ পালন করল| প্রভু মোশিকে যা আদেশ করেছিলেন, ইস্রায়েলীয়রা লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের প্রতি তা সম্পন্ন করল| 21 লেবীয়রা তাদের নিজেদের এবং তাদের পোশাক পরিচ্ছদ পরিষ্কার করলে হারোণ তাদের প্রভুর কাছে দোলনীয় নৈবেদ্যর মতো অর্পণ করল| হারোণ যে নৈবেদ্য নিবেদন করল তা তাদের পাপমুক্ত এবং শুচি করল| 22 এরপর লেবীয়রা তাদের নির্ধারিত কাজ করার জন্য সমাগম তাঁবুতে এল| তারা হারোণ এবং তার পুত্রদের অধীনে ছিল| প্রভু মোশিকে যা বলেছিলেন লেবীয়দের প্রতি তাই করা হয়েছিল| 23 এরপর প্রভু মোশিকে বললেন, 24 “এটি লেবীয়দের জন্য এক বিশেষ আদেশ: 25 বছর অথবা তার বেশী বয়স্ক প্রত্যেক লেবীয় পুরুষ সমাগম তাঁবুতে অবশ্যই আসবে এবং সমাগম তাঁবুর কাজকর্মে অংশ নেবে| 25 কিন্তু যখন কারোও বয়স 50 বছর তখন সে অবশ্যই ভারী কাজকর্ম থেকে অবসর নেবে| 26 পঞ্চাশ বছর অথবা তার বেশী বয়স্ক সেই সকল ব্যক্তিরা সমাগম তাঁবুতে পাহারা দিয়ে তাদের ভাইদের কাজে সাহায্য করতে পারে| কিন্তু তারা যেন কোন ভারী কাজ না করে| যখন তুমি লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের তাদের কাজের জন্য মনোনীত করেছো তখন তুমি এই কাজগুলি অবশ্যই করবে|”
1 ইস্রায়েলের লোকরা মিশর ছেড়ে চলে আসার পরে দ্বিতীয় বছরের প্রথম মাসে প্রভু সীনয় মরুভূমিতে মোশির সাথে এই কথা বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের ঠিক সমযে নিস্তারপর্বের পবিত্র দিন উদয়াপন করতে বলে দাও| 3 তারা অবশ্যই এই মাসের 14 তারিখ, গোধুলি বেলায উদ্বারের পবিত্র দিনের খাদ্য গ্রহণ করবে| তারা অবশ্যই নির্ধারিত সমযে এই কাজ করবে এবং নিস্তারপর্বের সকল নিয়ম তারা অবশ্যই পালন করবে|” 4 সুতরাং মোশি ইস্রায়েলের লোকদের নিস্তারপর্ব উদয়াপন করতে বলেছিল| 5 ইস্রায়েলের লোকরা প্রথম মাসের 14 তারিখে গোধুলি বেলায সীনয় মরুভূমিতে নিস্তারপর্ব পালন করেছিল| প্রভু মোশিকে যেভাবে আদেশ করেছিলেন ইস্রায়েলীয়রা ঠিক সেভাবেই কাজ করেছিল| 6 কিন্তু কিছু লোক ঐ দিনটিকে নিস্তারপর্বের পবিত্র দিন হিসেবে উদয়াপন করতে পারে নি| তারা অশুচি ছিল, কারণ তারা একটা মৃতদেহ স্পর্শ করেছিল| সুতরাং তারা ঐ দিনে মোশি এবং হারোণের কাছে গেল| 7 তারা মোশিকে বলল, “আমরা এক ব্যক্তির মৃতদেহ স্পর্শ করে অশুচি হয়েছি| নির্ধারিত সমযে প্রভুকে উপহার দিতে আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে| সুতরাং আমরা ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের সঙ্গে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করতে পারছি না| আমরা কি করব?” 8 মোশি তাদের বলল, “আমি প্রভুকে জিজ্ঞেস করবো তিনি এ ব্যাপারে কি বলেন|” 9 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 10 “তুমি এই কথাগুলো ইস্রায়েলের লোকদের বলো: এই নিয়ম তোমাদের এবং তোমাদের উত্তরপুরুষদের জন্যই| কোনো একজনের পক্ষে নির্ধারিত সমযে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করা সম্ভব নাও হতে পারে| হয়তো সেই ব্যক্তি মৃতদেহ স্পর্শ করে অশুচি হয়েছিল অথবা দূর দেশে যাত্রা করেছিল| 11 তবু সেই ব্যক্তি অন্য কোনোও সমযে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করতে পারবে| দ্বিতীয় মাসের 14 তারিখে গোধুলি বেলায অবশ্যই সে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করবে| ঐ সমযে তারা অবশ্যই নিস্তারপর্বের মেষ, খামির ছাড়া তৈরী রুটি এবং কিছু তেতো শাকপাতা দিয়ে খাবে| 12 তারা পরের দিন সকাল পর্য়ন্ত ঐ খাবারের কোনো কিছুই অবশিষ্ট রাখবে না এবং অবশ্যই সেই মেষের কোনো হাড় ভগ্ন করবে না| সে অবশ্যই নিস্তারপর্বের সব নিয়ম অনুসরণ করবে; 13 কিন্তু যে লোকটি শুচি এবং বেড়াতে যায় নি সে যদি নির্দিষ্ট সময় নিস্তারপর্ব উদয়াপন না করে, তাহলে তাকে অবশ্যই তার লোকদের কাছ থেকে আলাদা করে দেওয়া হবে| সে দোষী এবং শাস্তির য়োগ্য় কারণ সে নির্দিষ্ট সময় প্রভুকে তার উপহার দেয নি| 14 “তোমাদের সঙ্গে আছে এমন কোনো বিদেশী যদি প্রভুর নিস্তারপর্ব উদ্য়াপনের জন্য ইচ্ছুক হয় তাহলে সে অবশ্যই তা করবে কিন্তু সে অবশ্যই নিস্তারপর্বের সকল বিধি অনুসরণ করবে| একই নিয়ম সকলের জন্য প্রয়োজ্য|” 15 যেদিন সমাগম তাঁবু অর্থাত্ চুক্তির সেই তাঁবু স্থাপিত হল, সেদিন সন্ধ্যায ঈশ্বরের মেঘ সেটিকে আবৃত করল এবং সকাল পর্য়ন্ত পবিত্র তাঁবুর উপরের মেঘকে ঠিক আগুনের মতো দেখাচ্ছিল| 16 মেঘটি সমস্তক্ষণ পবিত্র তাঁবু আবৃত করত এবং রাত্রে সেটাকে আগুনের মতো দেখাতো| 17 মেঘটি পবিত্র তাঁবুর ওপর থেকে স্থান পরিবর্তন করলে, ইস্রায়েলীয়রা সেটিকে অনুসরণ করল| যখন মেঘটি থামত তখন ইস্রায়েলীয়রা সেখানেই শিবির স্থাপন করত| 18 কখন যাত্রা শুরু করতে হবে, কখন থামতে হবে এবং কখন শিবির স্থাপন করতে হবে সে ব্যাপারে ইস্রায়েলের লোকদের প্রভু এই রাস্তাই দেখিয়েছিলেন| যতক্ষণ পর্য়ন্ত পবিত্র তাঁবুর উপরে মেঘ থাকত, ততক্ষণ পর্য়ন্ত লোকরা সেই একই জায়গায় শিবির স্থাপন করে বসবাস করত| 19 কোনো কোনো সমযে পবিত্র তাঁবুর ওপরে দীর্ঘ সময় ধরে মেঘ থাকতো| ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর আদেশ পালন করত এবং সেই স্থান ত্যাগ করত না| 20 কোনো সমযে আবার অল্প কযেকদিনের জন্যে পবিত্র তাঁবুর উপরে মেঘ থাকতো| সুতরাং লোকরা প্রভুর আদেশ পালন করত - যখন মেঘ চলতে শুরু করত, তখন তারাও সেই মেঘকে অনুসরণ করত| 21 কোনো সময় আবার মাত্র এক রাত্রির জন্য মেঘ স্থায়ী হত পরদিন সকালেই আবার চলতে শুরু করত| সুতরাং লোকরা তাদের জিনিসপত্র এক জায়গায় জড়ো করে মেঘকে অনুসরণ করত| দিনের বেলায অথবা রাত্রিতে যখনই মেঘ চলতে শুরু করত তখনই লোকরা তাকে অনুসরণ করত| 22 যদি সেই মেঘ দুদিন অথবা এক মাস অথবা এক বছরের জন্য পবিত্র তাঁবুর উপরে স্থায়ী হত তখনও লোকরা প্রভুর আদেশ পালন করত| তারা সেই জায়গায় থাকত এবং সেই স্থান থেকে মেঘ না সরে যাওয়া পর্য়ন্ত সেই স্থান তারা ত্যাগ করত না| এরপর মেঘ সেই জায়গা থেকে উঠে চলতে শুরু করলে, লোকরাও চলতে শুরু করত| 23 সুতরাং লোকরা প্রভুর আদেশ পালন করত| প্রভু বললে তারা শিবির স্থাপন করত এবং প্রভু বললে তারা চলতে শুরু করত| লোকরা খুব সতর্কভাবে নজর রাখত এবং প্রভু মোশিকে যা আদেশ করতেন তা তারা পালন করত|
1 প্রভু মোশিকে বললেন: 2 “দুটি রূপোর শিঙা তৈরী কর| শিঙা দুটি তৈরী করার জন্য পেটানো রূপো ব্যবহার কর| লোকদের একসঙ্গে ডাকার জন্যে এবং শিবির স্থানান্তরের সময় বলার জন্য এই শিঙা দুটি ব্যবহার করা হবে| 3 যদি শিঙা দুটি এক সাথে দীর্ঘসুরে জোরে বাজাও, তাহলে সব লোক যেন সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে তোমার সামনে আসে| 4 কিন্তু যদি তুমি তোমার সঙ্গে দেখা করার জন্য নেতাদের অর্থাত্ ইস্রায়েলের বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানদের জড়ো করতে চাও, তাহলে কেবলমাত্র একটি শিঙাকেই দীর্ঘ সুরে বাজাবে| 5 “শিঙা দুটি অল্পক্ষণের জন্য বাজানো হলে বোঝাবে যে শিবিরকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে| তখন সমাগম তাঁবুর পূর্বদিকে যে পরিবারগোষ্ঠী শিবির স্থাপন করেছে তারা অবশ্যই চলতে শুরু করবে| 6 দ্বিতীয়বার শিঙা দুটিকে অল্পক্ষণের জন্য বাজালে সমাগম তাঁবুর দক্ষিণদিকে যে পরিবারগোষ্ঠী শিবির স্থাপন করেছে তারা চলতে শুরু করবে| 7 কিন্তু যদি বিশেষ সভার জন্য লোকদের এক জায়গায় একত্রিত করতে চাও, তাহলে শিঙা দুটিকে দীর্ঘ সময় ধরে কিন্তু অন্যভাবে বাজাবে| 8 কেবলমাত্র হারোণের পুত্ররা এবং যাজকরা শিঙা দুটিকে বাজাবে| এই বিধি তোমাদের এবং তোমাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য চিরকালীন বিধি| 9 “যদি তুমি তোমার কোনো শত্রুর সঙ্গে তোমার নিজের দেশে যুদ্ধ করতে যাও, তাহলে তুমি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাওয়ার আগে শিঙা দুটিকে অল্প সমযের জন্য জোরে বাজাবে| প্রভু তোমার ঈশ্বর, তোমার শিঙার আওয়াজ শুনতে পাবেন এবং তিনি তোমাকে তোমার শত্রুদের হাত থেকে বাঁচাবেন| 10 এছাড়াও তোমার বিশেষ সভার সময়, অমাবস্যার দিনগুলোতে এবং তোমাদের সকলের সুখের সমাবেশে এই শিঙা দুটিকে বাজাবে| তুমি যখন তোমার হোমবলি এবং মঙ্গল নৈবেদ্য প্রদান করবে সেই সময়ও শিঙা দুটিকে বাজাবে| প্রভু, তোমার ঈশ্বর তোমাকে যেন মনে রাখেন, সে জন্যই এই বিশেষ পদ্ধতি| এটি করার জন্য আমি তোমাকে আদেশ করছি; আমিই প্রভু তোমার ঈশ্বর|”‘ 11 ইস্রায়েলের লোকরা মিশর ত্যাগ করার পরে, দ্বিতীয় বছরের দ্বিতীয় মাসের 20 তম দিনে চুক্তির তাঁবুর ওপর থেকে মেঘ উঠল| 12 তাই ইস্রায়েলের লোকরা তাদের যাত্রা শুরু করল| তারা সীনয় মরুভূমি ত্যাগ করে পারণ মরুভূমিতে মেঘ থামা পর্য়ন্ত ভ্রমণ করল| 13 এই প্রথম লোকরা তাদের শিবির স্থানান্তর করল| প্রভু মোশিকে যেমন আদেশ করলেন, সেই ভাবেই তারা এটিকে স্থানান্তর করল| 14 যিহূদার শিবির থেকে প্রথমে তিনটি গোষ্ঠী গেল| তারা তাদের পতাকা নিয়েই ভ্রমণ করল| প্রথম গোষ্ঠীটি ছিল যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী| অম্মীনাদবের পুত্র নহশোন ছিল ঐ গোষ্ঠীর দল নেতা| 15 এরপর এলেন ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠী| সূযারের পুত্র নথনেল ছিল ঐ গোষ্ঠীর দল নেতা| 16 তারপরে এল সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠী| হেলোনের পুত্র ইলীয়াব ছিল ঐ গোষ্ঠীর দল নেতা| 17 এরপর পবিত্র তাঁবুটিকে তোলা হল, গের্শোন এবং মরারি পরিবারের লোকরা পবিত্র তাঁবুটিকে বহন করছিল, সুতরাং এই পরিবারের লোকরা সারিতে ঠিক তার পরেই ছিল| 18 এরপর রূবেণের শিবির থেকে তিনটি গোষ্ঠী তাদের পতাকাসহ ভ্রমণ করল| প্রথম গোষ্ঠীটি ছিল রূবেণের পরিবারগোষ্ঠী| শদেযূরের পুত্র ইলীযুর ছিল এই গোষ্ঠীর দল নেতা| 19 এরপর শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠী এল| সুরীশদ্দযের পুত্র শলুমীযেল ছিল এই গোষ্ঠীর দল নেতা| 20 এবং তারপরে এসেছিল গাদের পরিবারগোষ্ঠী| দ্য়ুযেলের পুত্র ইলীয়াসফ ছিল এই গোষ্ঠীর দল নেতা| 21 কহাত্ পরিবার, যারা পবিত্র তাঁবু বহন করত, এরপর তারা যাত্রা শুরু করল কারণ নতুন জায়গায় আসামাত্রই তাদের তাঁবুটি স্থাপন করতে হবে| 22 এরপর ইফ্রয়িমের শিবির থেকে তিনটি গোষ্ঠী এল| তারা তাদের পতাকাসহ ভ্রমণ করেছিল| প্রথম গোষ্ঠীটি ছিল ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী| অম্মীহূদের পুত্র ইলীশামা ছিল ঐ গোষ্ঠীর দলনেতা| 23 এরপর এসেছিল মনঃশির পরিবারগোষ্ঠী| পদাহসূরের পুত্র গমলীযেল ছিল এই গোষ্ঠীর দলনেতা| 24 এরপর এল বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী| গিদিযোনির পুত্র অবীদান ছিল ঐ গোষ্ঠীর দলনেতা| 25 শেষ তিনটি পরিবারগোষ্ঠী ছিল অন্যান্য সকল পরিবারগোষ্ঠীর পশ্চাদভাগরক্ষী| তারা ছিল দানের শিবিরের গোষ্ঠীভুক্ত| তারা তাদের পতাকা নিয়ে ভ্রমণ করল| প্রথম গোষ্ঠীটি ছিল দানের পরিবারগোষ্ঠী| অম্মীশদ্দযের পুত্র অহীযেষর ছিল এই গোষ্ঠীর দল নেতা| 26 এরপরে এল আশেরের পরিবারগোষ্ঠী অক্রণের পুত্র পগীযেল ছিল ঐ গোষ্ঠীর দল নেতা| 27 এরপরে এল নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠী| ঐননের পুত্র অহীরঃ ছিল ঐ গোষ্ঠীর দল নেতা| 28 স্থানান্তরে যাবার সময় ইস্রায়েলের লোকরা এইভাবেই একসাথে যেত| 29 মিদিযোনীয রূযেলের পুত্র ছিল হোবব| (রূযেল ছিল মোশির শ্বশুর|) মোশি হোরবকে বলল, “আমরা সেই দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছি যেটা ঈশ্বর আমাদের দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন| আমাদের সঙ্গে এসো আমরা তোমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবো| প্রভু ইস্রায়েলীয়দের পক্ষে মঙ্গল প্রতিজ্ঞা করেছেন|” 30 কিন্তু হোবব উত্তর দিল, “না, আমি তোমাদের সঙ্গে যাবো না| আমি আমার জন্মভূমিতে, আমার নিজের লোকদের কাছে ফিরে যাবো|” 31 তখন মোশি বলল, “দয়া করে আমাদের ছেড়ে যাবেন না| আপনি মরুভূমি সম্পর্কে আমাদের থেকেও বেশী জানেন| আপনি আমাদের পথ প্রদর্শক হতে পারেন| 32 আপনি যদি আমাদের সঙ্গে আসেন তাহলে প্রভু আমাদের যে সকল উত্তম বিষযের অধিকারী করবেন, সেটা আমরা আপনার সঙ্গে ভাগ করে নেব|” 33 এতে হোবব রাজী হল এবং তারা প্রভুর পাহাড়ের চূড়া থেকে যাত্রা শুরু করল এবং তিন দিন পথে চলল| যাজকগণ প্রভুর সঙ্গে চুক্তির সিন্দুকটি নিয়ে লোকদের আগে আগে হাঁটল| শিবিরের জন্য স্থান অন্বেষণে তারা তিনদিন পবিত্র সিন্দুকটিকে বহন করল| 34 প্রত্যেক দিনই প্রভুর মেঘ তাদের ওপরেই থাকত এবং প্রত্যেক দিন সকালে তারা যখন শিবির ত্যাগ করত, তখন মেঘ তাদের পথ প্রদর্শন করত| 35 শিবির স্থানান্তরের জন্য লোকরা যখনই পবিত্র সিন্দুকটিকে ওঠাতো, মোশি তখনই প্রত্যেকবারের মত বলত,“প্রভু তুমি ওঠ! তোমার শত্রুরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাক| তোমার শত্রুরা তোমার কাছ থেকে পালিয়ে যাক|” 36 যখনই পবিত্র সিন্দুকটিকে তার নিজের জায়গায় রাখা হত, মোশি তখনই প্রত্যেকবারের মত বলত, “প্রভু তুমি, কোটি কোটি ইস্রায়েলীয়দের কাছে ফিরে এসো|”
1 লোকরা তাদের সমস্যা সম্পর্কে অভিয়োগ করা শুরু করলে প্রভু তাদের অভিয়োগ শুনলেন এবং ক্ষুদ্ধ হলেন| প্রভুর কাছ থেকে আগুন এসে লোকদের মধ্যে জ্বলে উঠল| আগুন শিবিরের বাইরের দিকে কিছু কিছু এলাকা গ্রাস করল| 2 তখন লোকরা মোশির কাছে সাহায্যের জন্য ক্রন্দন করল| মোশি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল এবং আগুন নিভে গেল| 3 সুতরাং তারা ঐ জায়গাটির নাম রাখল তবেরা, কারণ প্রভুর আগুন তাদের শিবিরের মধ্যে জ্বলে উঠেছিল| 4 বিদেশীরা যারা ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে য়োগদান করেছিল, তারা অন্যান্য খাবার খেতে চাইল এবং ইস্রায়েলের লোকরা পুনরায অভিয়োগ করতে শুরু করল| তারা বলল, “কে আমাদের মাংস খেতে দেবে? 5 আমরা মিশরে যে মাছ খেতাম তা মনে পড়ছে| আমাদের ঐ মাছের জন্য কোনো দামই দিতে হত না| এছাড়াও আমাদের খুব ভালো শাকসব্জি ছিল যেমন শশা, ফুটি, পেঁযাজ জাতীয ফল, পেঁযাজ এবং রসুন| 6 কিন্তু এখন আমরা আমাদের শক্তি হারিযে ফেলেছি| এই মান্না ছাড়া আর কোন কিছুই আমরা চোখে দেখতে পাই না|” 7 (এই মান্না ছিল ধনিযা বীজের মত এবং এর রং ছিল গুগ্গুলের মতো| 8 লোকরা এই মান্না এক জায়গায় জড়ো করত| এরপর তারা পাথরের সাহায্যে সেগুলোকে গুঁড়ো করে পাত্রে সেটি রান্না করত| অথবা এটিকে পেষণ য়ন্ত্রে মিহি করে গুঁড়ো করে তা দিয়ে পিঠে তৈরী করত| পিঠেগুলোর স্বাদ ছিল অলিভ তেল দিয়ে তৈরী করা পিঠের মতো| 9 প্রত্যেক রাত্রে যখন শিশির পড়ে শিবির ভিজে যেত সেই সময় এই মান্না মাটিতে পড়তো|) 10 মোশি লোকদের অভিয়োগ করতে শুনল| প্রত্যেক পরিবারের লোকরা তাদের তাঁবুর দরজায বসে এই অভিয়োগ করছিল| প্রভু এতে খুব ক্ষুব্ধ হলেন এবং এটা মোশিকেও মনঃক্ষুন্ন করল| 11 মোশি প্রভুকে জিজ্ঞেস করল, “প্রভু, আপনি কেন আমাকে এই সব সমস্যায় জড়িয়েছেন? আমি আপনার সেবক| আমি এমন কি করেছি যে আপনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন? এই সমস্ত লোকের দায়িত্ব আপনি কেন আমার উপর দিয়েছেন? 12 আমি কি লোকদের গর্ভে ধারণ করেছি, আমি কি এদের জন্ম দিয়েছি? কিন্তু আমাকে তাদের যত্ন নিতে হয়, ঠিক যেমন ভাবে একজন সেবিকা তার দুই বাহুর মধ্যে একটি শিশুকে যত্ন করে| আপনি কেন আমাকে এটি করার জন্য বাধ্য করেছেন? পূর্বপুরুষদের যে জায়গাা দেবার জন্য আপনি প্রতিশ্রুতি করেছিলেন তাদের সেম্প জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কেন আপনি আমায় বাধ্য করেছেন? 13 এই সব লোককে খাওয়াবার জন্যে আমি কোথায মাংস পাব? তারা সমানে আমার কাছে অভিয়োগ করে বলছে, ‘আমাদের খাবার জন্য মাংস দাও!’ 14 আমি একা এই সমস্ত লোকর দেখাশুনো করতে পারবো না| এই দায়িত্ব আমার কাছে গুরুভার স্বরূপ| 15 আপনি যদি মনস্থ করে থাকেন যে আমার প্রতি এই রকম ব্যবহার করবেন তাহলে আমাকে এখনই হত্যা করুন| আপনি যদি আপনার সেবক হিসেবে আমাকে গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আমাকে এখনই মরতে দিন|” 16 প্রভু মোশিকে বললেন, “ইস্রায়েলের প্রাচীনদের মধ্য থেকে 70 জনকে আমার কাছে নিয়ে এসো| যাদের তুমি এই লোকদের নেতা বলে জান তাদের সমাগম তাঁবুতে নিয়ে এসো| ওখানেই ওদের তোমার সঙ্গে দাঁড়াতে দাও| 17 তখন আমি নীচে নেমে আসব এবং ওখানেই তোমার সঙ্গে কথা বলবো| তোমার ওপরে যে আত্মা আছে তার কিছুটা অংশ আমি তাদেরও দেবো| তখন তারা লোকদের দেখাশুনো করার জন্য তোমাকে সাহায্য করবে| তাহলে তোমাকে একা এই সব লোকদের দেখাশুনো করার ভার বহন করতে হবে না| 18 “লোকদের বলো: তোমরা আগামীকালের জন্য নিজেদের তৈরী করো| আগামীকাল তোমরা মাংস খাবে| প্রভু তোমাদের কান্না শুনেছেন| প্রভু তোমাদের কথা শুনেছেন, কারণ তোমরা কেঁদে বলেছ, ‘খাওয়ার জন্য আমাদের কে মাংস দেবে? আমাদের জন্য মিশরই ভালো ছিল|’ সুতরাং এখন প্রভু তোমাদের মাংস দেবেন এবং তোমরা তা খাবে| 19 একদিন অথবা দুইদিন অথবা পাঁচদিন অথবা দশদিন এমনকি কুড়িদিনেরও বেশী সময় ধরে তোমরা সেই মাংস খাবে| 20 কিন্তু তোমরা তা এক মাস ধরে খাবে| ঘেন্না না আসা পর্য়ন্ত তোমরা ঐ মাংস খাবে| এটাই তোমাদের ভবিতব্য কারণ তোমরা প্রভুকে অগ্রাহ্য করেছ যিনি তোমাদের মধ্যেই আছেন এবং তোমরা কেঁদে তাঁর সামনে অভিয়োগ করে বলেছ, ‘কেন আমরা আদৌ মিশর ত্যাগ করলাম?”‘ 21 মোশি বলল, “প্রভু এখানে 6,00,000 পুরুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে আর আপনি বলছেন, ‘আমি তাদের এক মাস ধরে খাওয়ার জন্য য়থেষ্ট পরিমাণে মাংস দেব! 22 যদি আমরা সমস্ত গরু এবং মেষদের হত্যা করি তাহলেও এক মাস ধরে এই সমস্ত লোকদের খাওয়ানোর জন্য তা য়থেষ্ট হবে না| এবং আমরা যদি সমুদ্রের সমস্ত মাছ ধরে নিই, তাহলেও তা তাদের জন্য য়থেষ্ট হবে না!” 23 কিন্তু প্রভু মোশিকে বললেন, “প্রভুর ক্ষমতা কি সীমিত? তুমি দেখতে পাবে যে, আমি যা বলি সেটা তোমার কাছে ফলে কি না|” 24 সুতরাং মোশি লোকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বেরিয়ে গেলেন| প্রভু যা যা বলেছিলেন মোশি তাদের তাই বলল| তখন মোশি প্রবীনদের মধ্য থেকে 70 জনকে এক জায়গায় জড়ো করে তাদের তাঁবুর চারদিকে দাঁড়াতে বলল| 25 তখন প্রভু মেঘের মধ্যে নেমে এসে মোশির সাথে কথা বললেন| মোশির ওপর আত্মা ছিল, প্রভু সেই আত্মার কিছু অংশ নিয়ে 70 জন প্রবীণদের ওপরেও রাখলেন| আত্মা তাদের ওপরে নেমে আসলে পরে তারা ভবিষ্যদ্বানী করতে শুরু করল| কিন্তু এরপর তারা আর ভাববানী বলে নি| 26 প্রবীণদের মধ্যে দুজন, ইল্দদ এবং মেদদ তাদের তাঁবুর বাইরে যায় নি| তাদের নাম প্রাচীনদের তালিকায ছিল, কিন্তু তারা শিবিরেই ছিল| কিন্তু তাদের ওপরেও আত্মা এলে তারা শিবিরের মধ্যেই ভবিষ্যদ্বানী করতে শুরু করল| 27 একজন যুবক দৌড়ে গিয়ে মোশিকে এই খবর দিল| সেই ব্যক্তি বলল, “ইল্দদ এবং মেদদ শিবিরের মধ্যেই ভবিষ্যদ্বানী করছ|” 28 নূনের পুত্র যিহোশূয় (যিনি কিশোর বয়স থেকেই মোশির সহকারী ছিলেন) মোশিকে বলল, “হে আমার গুরু মোশি আপনি তাদের থামান্!” 29 কিন্তু মোশি উত্তর দিল, “তুমি কি ভয় পাচ্ছো যে লোকরা ভাববে আমি এখন আর নেতা নই? আমার ইচ্ছা প্রভুর সব প্রজাই যেন ভবিষ্যদ্বানী করতে সক্ষম হয়| আমার ইচ্ছা প্রভু যেন সকলের মধ্যেই তাঁর আত্মাকে রাখেন|” 30 এরপর মোশি এবং ইস্রায়েলের নেতারা শিবিরে ফিরে গেল| 31 এরপর প্রভু ঝড়ের সৃষ্টি করলেন যা সমুদ্র থেকে হঠাত্ এসে হাজির হল| ঝড় সেখানে হঠাত্ই ভারুই পাখীদের নিয়ে এল| ভারুই পাখীরা শিবিরের চারধারে উড়ে বেড়াতে লাগল| এতো বেশী ভারুই পাখী ছিল যে সেই জায়গার মাটি ঢেকে গেল| ভারুই পাখীগুলো মাটির ওপরে তিন ফুট স্তর তৈরী করল| একজন মানুষ একদিনে যতদূর পর্য়ন্ত হাঁটতে পারে, ততদূর পর্য়ন্ত ভারুই পাখীগুলো ছড়িয়ে ছিল| 32 তারা গিয়ে সারাদিন এবং সারারাত ধরে ভারুই পাখীগুলোকে জড়ো করল| পরের দিনও সারাদিন ধরে তারা ভারুই পাখীগুলো জড়ো করল| একজন ব্যক্তি সবচেয়ে ন্যুনতম 60 বুশেল সংগ্রহ করল| এরপর লোকরা ভারুই পাখীর মাংস শিবিরের চারদিকে ছড়িয়ে রাখল| 33 যখন লোকরা মাংস খাওয়া শুরু করল প্রভু খুব ক্রুদ্ধ হলেন| সেই মাংস তাদের মুখে থাকতে থাকতেই এবং তাদের মাংস খাওয়া শেষ করার আগেই প্রভু তাদের গুরুতরভাবে অসুস্থ করে দিলেন| অনেক লোক মারা গেল এবং ঐ জায়গাতেই তাদের কবর দেওয়া হল| 34 এই কারণেই লোকরা ঐ জায়গার নাম রাখল কিব্রোত্-হত্তাবা| তারা ঐ জায়গার ঐ নাম দিল কারণ যাদের মাংসের জন্য খুব আকাঙ্খা ছিল তাদেরই ওখানে কবর দেওয়া হয়েছিল| 35 কিব্রোত্-হত্তাবা থেকে লোকরা হত্সেরোতের দিকে যাত্রা করল এবং সেখানেই থাকল|
1 মরিযম এবং হারোণ মোশির বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করল| কারণ মোশি একজন কুশীযা মহিলাকে বিবাহ করেছিল| তারা মনে করেছিল যে মোশির পক্ষে একজন কুশীযা মহিলাকে বিবাহ করা ঠিক হয় নি| 2 তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “প্রভু লোকের সঙ্গে কথা বলার জন্য কি কেবল মোশিকেই ব্যবহার করেছেন| প্রভু কি আমাদের মাধ্যমেও কথা বলেন নি?”প্রভু এই কথাগুলো শুনলেন| 3 (মোশি খুব নম্র ছিল| পৃথিবীতে যে কোনো মানুষের থেকে সে বেশী নম্র ছিল|) 4 হঠাত্ই প্রভু এলেন এবং মোশি, হারোণ এবং মরিযমের সঙ্গে কথা বললেন| প্রভু বললেন, “তোমরা তিনজন এখন সমাগম তাঁবুতে এসো|”সুতরাং মোশি, হারোণ এবং মরিযম পবিত্র তাঁবুতে গেল| 5 প্রভু মেঘ স্তম্ভের মধ্যে নেমে এলেন এবং পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ পথে এসে দাঁড়ালেন| প্রভু ডাকলেন, “হারোণ এবং মরিযম!” হারোণ এবং মরিযম তখন বেরিয়ে এল| 6 ঈশ্বর বললেন, “আমার কথা শোনো! তোমাদের মধ্যে ভাববাদী থাকবে| আমি প্রভু দর্শনে তাদের দেখা দেবো| আমি তাদের সঙ্গে স্বপ্নে কথা বলবো| 7 কিন্তু আমার দাস মোশি সেরকম নয়| মোশি আমার বিশ্বস্ত সেবক| আমার বাড়ীর প্রত্যেকেই তাকে বিশ্বাস করে| 8 আমি যখন তার সঙ্গে কথা বলি, তখন তার সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলি| আমি এমন কোনো ধাঁধার সাহায্য নিই না যার ভেতরে কোনো অর্থ লুকিয়ে আছে; আমি তাকে যে জিনিস জানাতে চাই সেটা আমি তাকে পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দিই| এবং মোশি প্রভুর সেই প্রতিমূর্ত্তির দিকে তাকিযে থাকতে পারে| সুতরাং আমার সেবক মোশির বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস তোমাদের কি করে হল? 9 প্রভু তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হলেন, তাই তাদের ত্যাগ করলেন| 10 পবিত্র তাঁবু থেকে মেঘ উপরে উঠলে দেখা গেল মরিযমের চামড়া হিমের মত সাদা| হারোণ ঘুরে মরিযমের দিকে তাকিযে দেখল, তার শরীরের চামড়ার রং তুষারের মতো সাদা| তার মারাত্মক চামড়ার রোগ হয়েছে| 11 তখন হারোণ মোশির কাছে অনুনয় করে বলল, “মহাশয়, দয়া করুন, আমরা মুর্খের মতো যে কাজ করেছিলাম তার জন্য আমাদের ক্ষমা করুন| 12 মৃত অবস্থার জন্ম হয়েছে এমন একটি শিশুর মতো তাকে তার শরীরের চামড়া হারাতে দেবেন না|” (কখনও কখনও এক একটি শিশুর জন্ম হয় যাদের শরীরের অর্ধেক চামড়া ক্ষযে গেছে|) 13 এই কারণে মোশি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করল, “ঈশ্বর, দয়া করে মরিযমকে এই অসুস্থতা থেকে আরোগ্য় করুন!” 14 প্রভু মোশিকে উত্তর দিলেন, “যদি তার পিতা তার মুখে থুথু ফেলে, তাহলে সে সাতদিনের জন্যে লজ্জিত থাকত না? সুতরাং তাকে সাত দিনের জন্য শিবিরের বাইরে রাখো| ঐ সমযের পরে, সে সুস্থ হয়ে উঠবে| তখন সে শিবিরে ফিরে আসতে পারে|” 15 সুতরাং তারা মরিযমকে সাত দিনের জন্যে শিবিরের বাইরে নিয়ে গেল এবং লোকরাও সেই জায়গা থেকে আর এগোলো না, যতক্ষণ পর্য়ন্ত তাকে আবার শিবিরে ফিরিযে না নিয়ে আসা হল| 16 এরপর লোকরা হত্সেরোত্ ত্যাগ করে পারণ মরুভূমির উদ্দেশ্যে গমন করল এবং ঐ মরুভূমিতেই শিবির স্থাপন করল|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “কনান দেশের জমি অনুসন্ধানের জন্য কিছু লোক পাঠিয়ে দাও| ইস্রায়েলের লোকদের আমি এই দেশটিই দেবো| বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকটির থেকে একজন করে নেতা পাঠিয়ে দাও|” 3 সুতরাং পারণ মরুভূমিতে বাস করার সময় মোশি প্রভুর আদেশ অনুসারে ইস্রায়েলের এই সব নেতাদের পাঠিয়ে দিয়েছিল| 4 ঐসব নেতাদের নামগুলো হল এই:রূবেণের পরিবারগোষ্ঠী থেকে সক্কুরের পুত্র শম্মুযা| 5 শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে হোরির পুত্র শাফট| 6 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী থেকে য়িফুন্নির পুত্র কালেব| 7 ইষাখর পরিবারগোষ্ঠী থেকে য়োষেফের পুত্র য়িগাল| 8 ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠী থেকে নূনের পুত্র হোশেয়| 9 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠী থেকে রাফুর পুত্র পল্টি| 10 সবূলূন পরিবারগোষ্ঠী থেকে সোদির পুত্র গদ্দীযেল| 11 য়োষেফের পরিবারগোষ্ঠী থেকে (মনঃশি) সুষির পুত্র গদ্দি| 12 দান পরিবারগোষ্ঠী থেকে গমল্লির পুত্র অম্মীযেল| 13 আশের পরিবারগোষ্ঠী থেকে মীখায়েলের পুত্র সথুর| 14 নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠী থেকে বপ্সির পুত্র নহ্বি| 15 গাদের পরিবারগোষ্ঠী থেকে মাখির পুত্র গ্য়ুযেল| 16 মোশি উল্লিখিত ব্যক্তিদের সেই দেশ দেখতে এবং জায়গাটি সম্বন্ধে ধারণা অর্জন করতে পাঠিয়েছিল| (মোশি নূনের পুত্র হোশেয়কে অন্য আরেকটি নামে ডাকত| মোশি তাকে যিহোশূয় বলে ডাকত|) 17 মোশি তাদের কনান দেশ অনুসন্ধান করতে পাঠিয়ে বলেছিল, “প্রথমে নেগেভের মধ্য দিয়ে যাও এবং তারপরে পাহাড়ী দেশে ঢুকে পড়ো| 18 দেখো, জায়গাটি কেমন দেখতে| ওখানে যারা বসবাস করে তাদের সম্বন্ধে খোঁজ নাও তারা কতোখানি শক্তিশালী অথবা দুর্বল? তারা সংখ্যায় কম না বেশী? 19 তারা যেখানে বসবাস করছে সেই জায়গাটি সম্বন্ধে জানো| সেখানকার জমি কি ভালো না খারাপ? কি ধরণের শহরে তারা বাস করে? তাদের সুরক্ষার জন্য কি শহরে কোনো প্রাচীর আছে? শহরগুলো কি মজবুতভাবে সুরক্ষিত? 20 এবং দেশটির সম্পর্কে অন্যান্য বিষযও জেনে নাও - যেমন সেখানকার জমি উর্বর না অনুর্বর? সেখানে গাছ আছে কি না? এছাড়াও সেই জায়গা থেকে ফিরে আসার সময় সেখান থেকে কিছু ফল নিয়ে আসার চেষ্টা করো|” (এটা ছিল সেই সময় যখন গাছে প্রথম দ্রাক্ষা পাকে|) 21 সুতরাং তারা সেই দেশ অনুসন্ধান করতে চলে গেল| তারা সীন মরুভূমি থেকে রহোব এবং লেবো হমাত পর্য়ন্ত জায়গা অনুসন্ধান করল| 22 তারা নেগেভের মধ্য দিয়ে দেশে প্রবেশ করে হিব্রোণে গেল| (মিশরের সোযন শহর তৈরীর সাত বছর আগে হিব্রোণ শহর তৈরী হয়েছিল|) অহীমান, শেশয এবং তল্ময ওখানে বাস করতেন| তারা ছিলেন অনাকের উত্তরপুরুষ| 23 এরপর তারা ইষ্কোল উপত্যকায গিয়ে সেখানে একটি দ্রাক্ষা গাছের শাখা কাটল| শাখাটিতে এক থোকা দ্রাক্ষা ছিল| তারা সেম্প শাখাকিে একটি খুঁটির মাঝখানে রেখে দুজন মিলে সেই খুঁটি বহন করল| এছাড়াও তারা ডালিম ফল এবং ডুমুরও নিয়ে এসেছিল| 24 ঐ জায়গাটির নাম ছিল ইষ্কোল উপত্যকা, কারণ ঐ জায়গাতেই ইস্রায়েলের লোকরা দ্রাক্ষার থোকাগুলো কেটেছিল| 25 40 দিন ধরে গুপ্তচররা সেই দেশ অনুসন্ধান করল| এরপর তারা শিবিরে ফিরে গেল| 26 ইস্রায়েলের গুপ্তচররা সেই সময় কাদেশের কাছে পারণ মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করেছিল| গুপ্তচররা মোশি হারোণ এবং ইস্রায়েলের সব লোকদের কাছে গিয়ে তারা যা যা দেখেছে সে সম্পর্কে বলল এবং তাদের সেই দেশের ফলও দেখাল| 27 তারা মোশিকে বলল, “আমরা সেই দেশে গেলাম যেখানে আপনি আমাদের পাঠালেন| সেই দেশটি প্রচুর ভালো ভালো দ্রব্যসামগ্রীতে পরিপূর্ণ| এখানে এমন কিছু ফল আছে যা ওখানে ফলে| 28 কিন্তু ওখানে যারা বসবাস করে তারা খুবই শক্তিশালী| শহরগুলো খুবই বড়ো| খুবই মজবুতভাবে সেগুলি সুরক্ষিত| এমনকি আমরা সেখানে অনাকের কযেকজন লোককে দেখেছি| 29 অমালেকের লোকরা নেগেভে বাস করে| হিত্তীয়, য়িবুষীয এবং ইমোরীয়েরা পার্বত্য শহরে বাস করে| কনানীযরা সমুদ্রের কাছে যর্দন নদীর পাশে বাস করে|” 30 মোশির কাছে যারা বসেছিল, কালেব তখন তাদের চুপ করতে বলল| তারপর কালেব বলল, “আমরা ওপরে যাবো এবং ঐ জায়গা আমাদের জন্য অধিকার করব| আমরা সহজেই ঐ জায়গা অধিকার করতে পারবো|” 31 কিন্তু তার সঙ্গে অন্য যারা গিয়েছিল তারা বলল, “আমরা ঐ লোকদের সঙ্গে লড়াই করতে পারবো না| তারা আমাদের থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী|” 32 এবং ঐ লোকরা ইস্রায়েলের অন্যান্য সমস্ত লোকদের বলল যে ঐ দেশের লোকদের পরাস্ত করার পক্ষে তারা য়থেষ্ট শক্তিশালী নয়| তারা বলল, “আমরা যে দেশ দেখেছিলাম সে দেশটি শক্তিশালী লোক পরিপূর্ণ| যারা ওখানে গিয়েছে এমন যে কোনো ব্যক্তিকেই ওখানকার অধিবাসীরা খুব সহজেই পরাস্ত করতে পারবে| এমন শক্তি তাদের আছে| 33 আমরা সেখানে দৈত্যাকার নেফিলিম লোকদের দেখেছি| (অনাকের উত্তরপুরুষরা নেফিলিম লোকদের থেকেই এসেছিল|) তাদের কাছে আমাদের ফড়িং-এর মতো দেখাচ্ছিল| হ্যাঁ, আমরা তাদের কাছে ফড়িং-এর মতো|”
1 সেই রাত্রে সমস্ত লোকরা শিবিরের মধ্যে প্রবল চিত্কার শুরু করল এবং কান্নাকাটিও করল| 2 ইস্রায়েলের লোকরা মোশি ও হারোণের বিরুদ্ধে অভিয়োগ করতে লাগল| সমস্ত মানুষ এক জায়গায় একত্রিত হয়ে মোশি ও হারোণকে বলল, “আমাদের মিশরে অথবা মরুভূমিতে মরে যাওয়া উচিত্ ছিল| এই নতুন দেশে এসে নিহত হওয়ার থেকে সেটাই বরং ভালো ছিল| 3 যুদ্ধে হত হওয়ার জন্যেই কি প্রভু আমাদের এই নতুন দেশে নিয়ে এলেন? শত্রুরা আমাদের হত্যা করবে এবং আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে যাবে| মিশরে ফিরে যাওয়াই কি আমাদের পক্ষে ভালো নয়?” 4 তখন লোকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, “এখন আমরা একজন নতুন নেতাকে নির্বাচন করবো এবং মিশরে ফিরে যাবো|” 5 মোশি এবং হারোণ সেখানে ইস্রায়েলের সমবেত সকলের সামনে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ল| 6 নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং য়িফুন্নির পুত্র কালেব, যারা সেই দেশ অনুসন্ধান করে দেখতে গিয়েছিলেন, এই ঘটনায় বিচলিত হয়ে নিজেদের কাপড় ছিঁড়ল| 7 সেখানে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকর সামনে ঐ দুইজন বলল, “আমরা যে দেশটি দেখেছি সেটি খুবই ভালো| 8 প্রভু যদি আমাদের উপর খুশী হয়ে থাকেন, তাহলে তিনিই আমাদের নেতৃত্ব দিয়ে ঐ জায়গায় নিয়ে যাবেন| এবং প্রভু আমাদের সেই সমৃদ্ধ এবং উর্বর দেশটি দিয়ে দেবেন! 9 সুতরাং প্রভুর বিরুদ্ধে যেও না| ঐ দেশের লোকদের ভয় পেও না| আমরা তাদের সহজেই পরাস্ত করব| তারা আর সুরক্ষিত নয়, তা তাদের থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে| কিন্তু আমাদের সঙ্গে প্রভু আছেন| সুতরাং ভয় পেও না!” 10 সকলেই যখন যিহোশূয় এবং কালেবকে পাথর দিয়ে হত্যা করার কথা বলছিল, সেই সময় সমাগম তাঁবুর ওপরে তখনই প্রভুর মহিমা প্রকাশিত হল এবং সকলেই সেটা দেখতে পেল| 11 প্রভু মোশিকে তখনই বললেন, “এই সব লোকরা আর কতদিন আমার বিরুদ্ধাচরণ করবে? তাদের মধ্যে আমি যে সব নানা অলৌকিক কাজ করেছি তা দেখা সত্ত্বেও এরা কতদিন আমাকে অবিশ্বাস করবে? 12 আমি তাদের ভয়ঙ্করভাবে অসুস্থ করে দিয়ে হত্যা করবো| আমি তাদের ধ্বংস করবো এবং তোমাকে এদের চেয়ে বড় এবং বলবান জাতিতে পরিণত করবো|” 13 তখন মোশি প্রভুকে বলল, “আপনি যদি তা করেন তবে, মিশরীয়রা সে সম্পর্কে জানতে পারবে| তারা জানে যে আপনার লোকদের মিশর থেকে বের করে আনার সময় আপনি আপনার ক্ষমতা প্রয়োগ করেছিলেন| 14 এবং মিশরের লোকরা এ সম্পর্কে কনানের লোকদের কাছেও বলবে| তারা এর মধ্যেই জেনে গেছে যে আপনিম্প প্রভু| তারা জানে যে আপনি আপনার লোকদের সঙ্গে আছেন| কারণ তারা আপনাকে দেখতে পায় এবং আপনার মেঘ তাদের উপর অবস্থিত| তারা এও জানে যে দিনের বেলায মেঘস্তম্ভে থেকে এবং রাত্রিবেলা অগ্নিস্তম্ভে থেকে তাদের আগে আগে যান| 15 সুতরাং আপনি যদি এদের সকলকে একসাথে হত্যা করেন, তাহলে সেই সব জাতি, যারা আপনার ক্ষমতা সম্পর্কে শুনেছে, তারা বলবে, 16 “প্রভু এই সব লোকদের এই দেশে আনতে সক্ষম হন নি, যার সম্বন্ধে তিনি তাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| এই কারণেই প্রভু তাদের মরুভূমিতে হত্যা করেছেন|’ 17 “সুতরাং এখন হে প্রভু আপনি আপনার বাক্য় অনুসারে আপনার শক্তি প্রদর্শন করুন| 18 আপনি বলেছিলেন, ‘প্রভু ধীরে ক্রুদ্ধ হন এবং প্রেমে মহান|’ পাপী এবং বিধি ভঙ্গকারীদের তিনি ক্ষমা করেন; কিন্তু তিনি অবশ্যই দোষীদের শাস্তি দেন| প্রভু ঐসব লোকদের শাস্তি দেন এবং এছাড়াও তাদের পুত্রদের, তাদের পৌত্র-পৌত্রীদের এমনকি তাদের প্রপৌত্র প্রপৌত্রীদেরও এই সকল খারাপ কাজের জন্য শাস্তি দেন!’ 19 তাই এখন আপনি এইসব লোকদের আপনার মহত্ ভালোবাসা দেখান| তাদের পাপকে ক্ষমা করে দিন| মিশক ত্যাগ করার পর থেকে এখন পর্য়ন্ত আপনি তাদের যেভাবে ক্ষমা করে এসেছেন সেই ভাবেই এখনও আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন|” 20 প্রভু উত্তর দিয়ে বললেন, “হ্যাঁ, তুমি যে ভাবে বলেছো, সেই ভাবেই আমি তাদের ক্ষমা করে দেবো| 21 কিন্তু আমি তোমাকে সত্য কথাই বলছি| আমি যেমন নিশ্চিতভাবেই বেঁচে আছি এবং আমার মহিমায যেমন সারা পৃথিবী নিশ্চিতভাবেই পরিপূর্ণ, তেমনি নিশ্চয়তার সঙ্গেই আমি তোমার কাছে শপথ করছি| 22 মিশর থেকে আমি যাদের নিয়ে এসেছিলাম, তাদের কেউই কনান দেশ দেখতে পাবে না| কারণ ঐসব লোকই আমার মহিমা এবং মিশরে ও মরুভূমিতে আমি যে সব অলৌকিক কাজ করেছিলাম সেগুলো দেখেছিল| কিন্তু তাও তারা আমাকে অমান্য করেছে এবং আমাকে এই নিয়ে দশবার পরীক্ষা করেছে| 23 আমি তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম| আমি শপথ করেছিলাম যে আমি তাদের ঐ জায়গা দিয়ে দেব| কিন্তু যারা আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে, তাদের কেউই সেই জায়গায় কোনোদিন প্রবেশ করবে না| 24 তবে আমার সেবক কালেব একটু আলাদা রকমের; সে আমাকে পুরোপুরি অনুসরণ করেছে| সুতরাং সে যে জায়গা এর মধ্যেই দেখে নিয়েছে, আমি তাকে সেই জায়গাতেই নিয়ে আসব এবং তার বংশ সেই জায়গা অধিকার করবে| 25 অমালেকীয়রা এবং কনানীযরা উপত্যকায বাস করছে| সুতরাং আগামীকাল তুমি অবশ্যই এই জায়গা ত্যাগ করবে| সূফ সাগরে যাওয়ার পথ ধরে তুমি মরুভূমিতে ফিরে যাও|” 26 প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন, 27 “এই সব দুষ্ট লোকরা আর কতদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে অভিয়োগ করবে? আমি তাদের অভিয়োগ ও অসন্তোষ শুনেছি| 28 সুতরাং তাদের বলে দাও, ‘তোমরা যে সব ব্যাপারে অভিয়োগ করেছিলে, প্রভু নিশ্চিতভাবেই তোমাদের সেই সব অভিয়োগগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন| তোমাদের যা হবে তা হল এই: 29 মরুভূমিতেই তোমরা মারা যাবে| 20 বছর অথবা তার বেশী বয়স্ক প্রত্যেক ব্যক্তি, যারা প্রত্যেকে আমার লোকদের একজন বলে গণ্য ছিল, তারা মারা যাবে| কারণ তোমরা আমার বিরুদ্ধে অর্থাত্ প্রভুর বিরুদ্ধে অভিয়োগ করেছিলে| 30 সুতরাং যে দেশ আমি তোমাদের দেবো বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সেখানে তোমাদের কেউই কোনোদিন প্রবেশ করতে এবং বাস করতে পারবে না| কেবলমাত্র য়িফুন্নির পুত্র কালেব এবং নূনের পুত্র যিহোশূয় সে দেশে প্রবেশ করতে পারবে| 31 তোমরা ভয় পেয়েছিলে এবং অভিয়োগ করেছিলে যে নতুন দেশে তোমাদের শত্রুরা তোমাদের কাছ থেকে তোমাদের সন্তানদের ছিনিয়ে নিয়ে যাবে; কিন্তু আমি বলছি, আমি ঐ সন্তানদের সেই দেশে নিয়ে আসবো| তোমরা যা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছো, তারা সেই জিনিসগুলোই উপভোগ করবে| 32 কিন্তু তোমরা এই মরুভূমিতেই মারা যাবে| 33 “তোমাদের সন্তানরা 40 বছর ধরে মরুভূমিতে মেষপালক হয়ে থাকবে| তোমাদের অবিশ্বস্ততার জন্য তারা শাস্তি ভোগ করবে| তারা অবশ্যই এই কষ্ট ভোগ করবে যতক্ষণ পর্য়ন্ত না তোমরা সবাই মরুভূমিতে মারা যাচ্ছে| 34 তোমরা 40 বছর ধরে তোমাদের পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করবে| (অর্থাত্ 40 দিন ধরে লোকরা যে জায়গাটি অনুসন্ধান করেছিলো তার প্রতিদিনের জন্য এক বছর করে|) তখন তোমরা বুঝতে পারবে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে গেলে কি হতে পারে| 35 “আমি প্রভু এবং আমিই শপথ করছি, এই মন্দ লোকরা যারা একত্রে আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি এই কাজগুলো করবো| তারা সকলেই এই মরুভূমিতে মারা যাবে|” 36 মোশি যাদের নতুন দেশ অনুসন্ধান করতে পাঠিয়েছিল তারাই ফিরে এসে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের মধ্যে অভিয়োগ ছড়িয়ে দিয়েছিল| তারা বলেছিল, যে লোকরা ঐ দেশে প্রবেশ করার পক্ষে য়থেষ্ট শক্তিশালী নয়, 37 সেই দেশের অখ্যাতিকারী এই লোকরাই মহামারীতে মারা পড়ল - প্রভুর ইচ্ছা অনুসারেই তা হল| 38 কিন্তু যারা দেশ অনুসন্ধান করতে গিয়েছিল তাদের মধ্যে কেবল নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং য়িফুন্নির পুত্র কালেব জীবিত থাকল| 39 মোশি ইস্রায়েলের লোকদের এই সব কথা বললে ইস্রায়েলের সাধারণ লোকরা শোকে ভেঙে পড়ল| 40 পরদিন খুব সকালে উঠে লোকরা পর্বতের চূড়ার দিকে এগোল| তারা বলল, “এই আমরা, প্রভু যে দেশের কথা বলেছেন চলো আমরা সেখানে যাই কারণ আমরা পাপ করেছি|” 41 কিন্তু মোশি বলল, “তোমরা প্রভুর আদেশ পালন করছ না কেন? তোমরা সফল হবে না| 42 তোমরা ঐ দেশে যেও না| প্রভু তোমাদের সঙ্গে নেই, এই কারণে শত্রুরা সহজেই তোমাদের পরাস্ত করতে পারবে| 43 সেখানে তোমাদের বিরুদ্ধে অমালেকীয়রা এবং কনানীযরা যুদ্ধ করবে| তোমরা প্রভুর পথ থেকে সরে এসেছো| সুতরাং তোমরা যখন তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে তখন তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকবেন না এবং তোমরা সকলেই যুদ্ধে মারা যাবে|” 44 কিন্তু লোকরা মোশিকে বিশ্বাস করে নি| তারা পর্বতের চূড়ার দিকে এগিয়ে গেল| কিন্তু প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক এবং মোশি তাদের সঙ্গে যায় নি| 45 এরপর উঁচু পর্বতের ওপরে বসবাসকারী অমালেকীয়রা এবং কনানীযেরা নীচে নেমে এসে তাদের উপর আঘাত হানল এবং খুব সহজেই তাদের পরাস্ত করে হর্মা পর্য়ন্ত সমস্ত রাস্তা তাড়া করল|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে কথা বলো এবং তাদের বলো: আমি তোমাদের একটি দেশ দিচ্ছি যা তোমাদের বাসভূমি হবে| যখন তোমরা সেই দেশে প্রবেশ করবে, 3 তখন তোমরা অবশ্যই প্রভুকে আগুনে তৈরী এক বিশেষ নৈবেদ্য প্রদান করবে| তার সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| তোমরা হোমবলি নৈবেদ্য, বিশেষ প্রতিশ্রুতি, বিশেষ উপহার, মঙ্গল নৈবেদ্য, বিশেষ ছুটির জন্য তোমাদের গোরু, মেষ এবং ছাগল ব্যবহার করবে| 4 “উপহার উত্সর্গকারী ব্যক্তি সেই স্থানে প্রভুকে দেবার জন্য যেন শস্য নৈবেদ্যও নিয়ে আসে| এই শস্যের নৈবেদ্য হবে 1 কোযার্ট অলিভ তেল মিশ্রিত 8 কাপ মিহি মযদা| 5 প্রত্যেক সমযে হোমবলির জন্য একটি করে মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে, এছাড়াও তুমি পেয় নৈবেদ্যর জন্য 1 কোযার্ট দ্রাক্ষারস উত্সর্গ করবে| 6 “তুমি যদি মেষ দাও তাহলে তুমি অবশ্যই শস্যের নৈবেদ্যও তৈরী করবে| এই শস্যের নৈবেদ্য হবে 1-1/4 কোযার্ট অলিভ তেলে মিশ্রিত 16 কাপ মিহি মযদা| 7 এবং তুমি অবশ্যই পেয় নৈবেদ্যর জন্য 1-1়/4 কোযার্ট দ্রাক্ষারস উত্সর্গ করবে| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 8 “তুমি হোমবলি, নৈবেদ্য, মঙ্গল নৈবেদ্য অথবা প্রভুর কাছে বিশেষ প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে একটি অল্প বয়স্ক বৃষেরও ব্যবস্থা করতে পারো| 9 ঐ সময় তুমি বৃষের সঙ্গে অবশ্যই শস্যের নৈবেদ্য নিয়ে আসবে| সেই শস্যের নৈবেদ্য হবে 2 কোযার্ট অলিভ তেলে মিশ্রিত 24 কাপ মিহি মযদা| 10 এছাড়াও পেয় নৈবেদ্যর জন্য 2 কোযার্ট দ্রাক্ষারসও নিয়ে আসবে| এই নৈবেদ্য হবে আগুন দিয়ে তৈরী| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 11 প্রত্যেকটি বৃষ, মেষ, মেষশাবক অথবা ছাগল, যা তুমি প্রভুকে দিচ্ছো, তা এভাবেই তৈরী হবে| 12 তুমি যে পশুগুলো দিচ্ছো তার প্রত্যেকটির জন্যই এটি কোরো| 13 “প্রভুকে খুশী করার জন্য ইস্রায়েলের প্রত্যেক নাগরিক এই পদ্ধতিতে আগুনের সাহায্যে তৈরী নৈবেদ্য প্রদান করবে| 14 আর এখন থেকে বিদেশীরা যারা তোমাদের সঙ্গেই বাস করে, যদি তারা প্রভুকে খুশী করার জন্যে আগুনের সাহায্যে তৈরী কোনো নৈবেদ্য প্রদান করে, তাহলে তারাও তোমাদের মতোই একই পদ্ধতি অনুসরণ করে সেই নৈবেদ্য প্রদান করবে| 15 এই একই বিধি সকলের জন্য হবে, ইস্রায়েলের লোকদের জন্যে এবং তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশীদের জন্যেও| এই বিধি চিরকাল চলবে| তুমি এবং তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী প্রত্যেকেই প্রভুর কাছে সমান| 16 এর অর্থ হল তোমরাও একই বিধি এবং নিয়ম অনুসরণ করবে| ঐ বিধি এবং নিয়ম তোমাদের জন্যে এবং তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশীদের জন্যও প্রয়োজ্য|” 17 প্রভু মোশিকে বললেন, 18 “ইস্রায়েলের লোকদের এই কথাগুলো বলো: আমি তোমাদের অন্য দেশে নিয়ে যাচ্ছি| 19 তোমরা যখন সেই দেশে পৌঁছে সেই দেশের কোনো খাদ্য গ্রহণ করবে, তখন অবশ্যই প্রভুকে সেই খাদ্যের কিছু অংশ উপহার হিসাবে উত্সর্গ করবে| 20 তোমরা শস্য গুঁড়ো করে রুটির জন্য মযদার তাল তৈরী করবে এবং সেই মযদার তালের প্রথমটা প্রভুকে উপহার হিসেবে প্রদান করবে| শস্য মাড়ানোর জায়গা থেকে আনা শস্য যেভাবে উত্সর্গ করা হয় এটিও সেইভাবেই করো| 21 এই নিয়ম চিরকাল চলবে| তোমরা অবশ্যই ঐ মযদার তালের প্রথমটা প্রভুকে উপহার হিসেবে প্রদান করবে| 22 “এখন তোমরা যদি কোনো ভুল করো এবং প্রভু মোশিকে যে আদেশ করেছেন তার কোনোটা পালন করতে ভুলে যাও, তাহলে তোমরা কি করবে? 23 প্রভু মোশির মাধ্যমে এই আদেশগুলো দিয়েছিলেন| যেদিন প্রভু এই আদেশগুলো দিয়েছিলেন সেদিন থেকেই আদেশগুলির কার্য়কারিতা শুরু হয়েছিল এবং আদেশগুলি চিরকাল চলবে| 24 সুতরাং যদি তোমরা কোন ভুল কর এবং এই আজ্ঞাগুলো পালন করতে ভুলে যাও তাহলে কি করবে? যদি ইস্রায়েলের সব লোকই ভুল করে, তাহলে সবাই একত্রে প্রভুকে একটি অল্পবয়সী বৃষ হোমবলির নৈবেদ্য হিসেবে প্রদান করবে| তার সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| এছাড়াও বৃষের সঙ্গে নৈবেদ্য হিসেবে দেবার জন্যে শস্য এবং পেয় নৈবেদ্য প্রদানের কথা মনে রাখবে| তোমরা অবশ্যই পাপের জন্য একটি পুরুষ ছাগলও নৈবেদ্য হিসেবে প্রদান করবে| 25 “এই ভাবে যাজক ইস্রায়েলের সমস্ত লোককে শুচি করবেন যেন তারা পাপের ক্ষমা লাভ করে কারণ তারা ভুল করে সেই কাজ করেছে| সুতরাং তারা যখন এ সম্বন্ধে জানতে পারল, তখনই তারা প্রভুর কাছে আগুনে তৈরী নৈবেদ্য এবং কৃত পাপের জন্য নৈবেদ্য আনল| 26 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এবং তাদের সঙ্গে বসবাসকারী অন্যান্য সকলকেই ক্ষমা করে দেওয়া হবে| তাদের ক্ষমা করা হবে কারণ তারা ভুলবশতঃ ঐ কাজ করেছিল| 27 “কিন্তু যদি কেবলমাত্র একজন ব্যক্তি ভুল করে পাপ করে, তাহলে সে অবশ্যই একটি এক বছর বয়স্ক স্ত্রী ছাগল নিয়ে আসবে| সেই ছাগলটি হবে পাপের জন্য নৈবেদ্য| 28 সেই ব্যক্তিকে শুচি করার জন্য যাজক অবশ্যই রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে| সেই ব্যক্তিটি ভুল করেছিল এবং প্রভুর সামনে পাপ করেছিল| যাজক সেই ব্যক্তির জন্য প্রায়শ্চিত্ত করলে তাকে ক্ষমা করা হবে| 29 এই বিধিটি প্রত্যেকের জন্যই, যে ভুল করবে এবং যে পাপ করবে| ইস্রায়েলের পরিবারে জাত প্রত্যেকের জন্য এবং তোমাদের সঙ্গে বসবাসকারী বিদেশীদের জন্যও এই একই বিধি বলবত্ থাকবে| 30 “কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তি জেনেশুনে ভুল করে তাহলে সে প্রভুর বিরুদ্ধে গেছে| সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই তার লোকদের কাছ থেকে পৃথক রাখা হবে| ইস্রায়েলের পরিবারে জাত কোনো ব্যক্তি অথবা তাদের সঙ্গে বসবাসকারী বিদেশীদের জন্যও এই একই নিয়ম| 31 সেই ব্যক্তি প্রভুর বাক্য় অবজ্ঞা করেছে এবং সেই আজ্ঞা লঙঘন করেছে সুতরাং সে তোমার গোষ্ঠী থেকে আলাদা থাকবে| সেই ব্যক্তি দোষী এবং অবশ্যই শাস্তি পাবে|” 32 ইস্রায়েলের লোকরা মরুভূমিতে থাকাকালীন একজনকে বিশ্রামবারে কাঠ জড়ো করতে দেখল| 33 যে লোকরা তাকে কাঠ জড়ো করতে দেখেছিল তারা তাকে মোশি এবং হারোণের কাছে নিয়ে এল এবং সমস্ত লোক চারদিকে একত্রিত হল| 34 তারা সেই লোকটিকে পাহারায রাখল কারণ তারা জানতো না, তারা কিভাবে তাকে শাস্তি দেবে| 35 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “লোকটিকে অবশ্যই মরতে হবে| শিবিরের বাইরে সমস্ত লোক তার ওপর পাথর ছুঁড়বে|” 36 এই কারণে লোকরা তাকে শিবিরের বাইরে নিয়ে গেল এবং তাকে পাথর মেরে হত্যা করল| প্রভু মোশিকে যেভাবে আজ্ঞা করেছিলেন, তারা ঠিক সেভাবেই এটি করল| 37 প্রভু মোশিকে বললেন, 38 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো তারা যেন সুতো দিয়ে ঝালর তৈরী করে তা কাপড়ের কোণে লাগায এবং এখন থেকে বংশ পরম্পরায তারা যেন এই নিয়ম পালন করে| এই গোছাগুলোর প্রত্যেকটিতে তারা যেন একটি করে নীল সুতো রাখে| 39 এই সুতোর গোছাগুলোর দিকে তাকালে তোমরা প্রভুর দেওয়া আজ্ঞাগুলো মনে করতে পারবে| আর তখনই আজ্ঞাগুলো তোমরা পালন করবে| আজ্ঞাগুলো ভুলে গিয়ে, তোমাদের শরীর ও চোখ যা চায, তাই করে অবিশ্বস্ত হবে না| 40 আমার সব আজ্ঞাগুলো পালন করার কথা তোমরা মনে রাখবে| তাহলে তোমরা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে পবিত্র হবে| 41 আমি প্রভু তোমাদের ঈশ্বর| আমিই সেই যিনি তোমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলাম| তোমাদের প্রভু হওয়ার জন্যই আমি এটা করেছিলাম| আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর|”
1 কোরহ, দাথন, অবীরাম এবং ওন মোশির বিরুদ্ধে গেল| (কোরহ ছিল ষিষ্হরের পুত্র| ষিষ্হর ছিল কহাতের পুত্র এবং কহাত্ ছিল লেবির পুত্র| দাথন এবং অবীরাম ছিল দুই ভাই এবং ইলীয়াবের পুত্র| ওন ছিল পেলতের পুত্র| দাথন, অবীরাম এবং ওন ছিলেন রূবেণের উত্তরপুরুষ|) 2 ঐ চারজন ব্যক্তি ইস্রায়েলের অন্যান্য 250 জন পুরুষকে একত্রিত করে মোশির বিরুদ্ধে গেল| তারা ছিল লোকদের নির্বাচিত নেতা| সমস্ত লোক তাদের চিনত| 3 তারা মোশি এবং হারোণের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য একসাথে এল| তারা মোশি এবং হারোণকে বলল, “আপনি বড্ড বেশী বাড়াবাড়ি করছেন| ইস্রায়েলের সকল লোক পবিত্র এবং প্রভু এখনও তাদের মধ্যেই বাস করেন| প্রভুর অন্যান্য লোকদের থেকে আপনি নিজেকে অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছেন|” 4 মোশি এই কথা শুনে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ল| 5 আর সে কোরহ এবং তার অনুসরণকারীদের বলল, “আগামীকাল সকালে প্রভু দেখিয়ে দেবেন কোন্ ব্যক্তি প্রকৃতই তাঁর এবং কে প্রকৃতই পবিত্র| আর সেই ব্যক্তিকে প্রভু তাঁর কাছে নিয়ে আসবেন| প্রভু যাকে বেছে নেবেন তাকে তাঁর কাছে নিয়ে আসবেন| 6 সুতরাং কোরহ তুমি এবং তোমার অনুসরণকারী এই কাজ করবে: 7 আগামীকাল ধুনুচি নিয়ে তাতে সুগন্ধি ধূপধূনো রাখবে| তারপরে সেই ধুনুচিগুলো প্রভুর সামনে নিয়ে আসবে| প্রভু সেই ব্যক্তিকে বেছে নেবেন যে সত্যই পবিত্র| তোমরা লেবীয়রা অনেক দূরে চলে গেছো - তোমরা ভুল করছো|” 8 মোশি কোরহকে এও বলল, “লেবীয়রা দয়া করে আমার কথা শোন| 9 এটাই কি য়থেষ্ট নয় যে ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাদের ইস্রায়েলের মণ্ডলী থেকে আলাদা করে প্রভুর পবিত্র তাঁবুর সেবা করার জন্য এবং মণ্ডলীর সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর সেবা করার জন্য তোমাদের তাঁর কাছে নিয়ে এসেছেন? 10 যাজকদের কাজে সাহায্য করার জন্য ঈশ্বর তোমাদের অর্থাত্ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের নিয়ে এসেছিলেন| কিন্তু তোমরা এখন যাজক হওয়ার চেষ্টা করছো| 11 তুমি এবং তোমার অনুসরণকারীরা একত্রিত হয়ে প্রভুর বিরোধিতা করেছো| হারোণ কি কোনো ভুল কাজ করেছে যে তাঁর বিরুদ্ধে তোমরা অভিয়োগ করছো?” 12 এরপর মোশি ইলীয়াবের পুত্র দাথন এবং অবীরামকে ডাকল| কিন্তু ঐ দুই ব্যক্তি বললেন, “আমরা যাবো না| 13 এটাই কি য়থেষ্ট নয় যে আপনি উত্তম জিনিসে পরিপূর্ণ শস্য শ্যামলা দেশ থেকে আমাদের নিয়ে এসেছেন যাতে মরুভূমির হত্যা করতে পারেন? আর এখন আপনি আমাদের উপর কর্তৃত্ত্বও করবেন? 14 আমরা কেন আপনাকে অনুসরণ করবো? উত্তম জিনিসে পরিপূর্ণ এমন কোনো দেশে তো আপনি আমাদের নিয়ে আসেন নি| আপনি আমাদের ঈশ্বরের শপথ করা সেই দেশও দেন নি এবং আমাদের চারণভূমি অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতও দেন নি| আপনি কি এই সব লোকদের ক্রীতদাস করবেন? না, আমরা আসবো না|” 15 এই কারণে মোশি খুবই ক্রুদ্ধ হল| সে প্রভুকে বলল, “আমি এইসকল লোকদের সঙ্গে কোনোদিন কোন অন্যায করি নি| আমি কোনো সমযেই তাদের কাছ থেকে কোনো কিছুই নিই নি, একটি গাধা পর্য়ন্ত নয়| প্রভু আপনি এদের উপহার গ্রহণ করবেন না!” 16 এরপর মোশি কোরহকে বলল, “আগামীকাল তুমি এবং তোমার অনুসরণকারীরা প্রভুর সামনে দাঁড়াবে| সেখানে হারোণ, তুমি ও তোমার লোকরা থাকবে| 17 তোমরা প্রত্যেকে একটি করে ধুনুচি এনে তাতে সুগন্ধি ধূপধূনো রাখবে এবং তা ঈশ্বরকে প্রদান করবে| সেখানে নেতাদের জন্য 250 টি ধুনুচি থাকবে এবং একটি পাত্র তোমার জন্য ও একটি পাত্র হারোণের জন্য থাকবে|” 18 সুতরাং প্রত্যেকে একটি ধুনুচি নিয়ে তার ওপর জ্বলন্ত কযলা ও সুগন্ধি ধূপধূনো রাখল| এরপর তারা মোশি ও হারোণের সাথে সামগম তাঁবুর প্রবেশপথে গিয়ে দাঁড়ালো| 19 কোরহও সমাগম তাঁবুর প্রবেশপথে তাদের বিরুদ্ধে সমস্ত লোককে জড়ো করেছিল| এর ঠিক পর সেই জায়গায় সকলের সামনে প্রভুর মহিমা প্রকাশিত হল| 20 প্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, 21 “এই সকল লোকদের থেকে দূরে সরে যাও| আমি এখনই তাদের ধ্বংস করতে চাই|” 22 কিন্তু মোশি এবং হারোণ মাটিতে নতজানু হয়ে অনুনয় করে বলল, “হে ঈশ্বর, আপনি জানেন লোকরা তাদের মনে কি ভাবছে|একজন পাপ করলে কি আপনি সমস্ত মণ্ডলীর প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন?” 23 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 24 “কোরহ, দাথন এবং অবীরামের তাঁবু থেকে লোকদের সরে যেতে বলো|” 25 মোশি উঠে দাঁড়াল এবং দাথন ও অবীরামের কাছে গেল| ইস্রায়েলের সকল প্রবীণরা (নেতারা) তাঁকে অনুসরণ করল| 26 মোশি লোকদের সাবধান করে দিয়ে বলল, “এই সকল মন্দ লোকদের তাঁবু থেকে সরে যাও| তাদের কোনো জিনিস স্পর্শ কোরো না| যদি তোমরা সেটা করো, তাহলে তাদের পাপের জন্য তোমরা ধ্বংস হবে|” 27 সেই কারণে কোরহ, দাথন এবং অবীরামের তাঁবু থেকে লোকরা সরে গেল| আর দাথন এবং অবীরাম বের হয়ে তাদের স্ত্রীদের সন্তানদের এবং ছোটো শিশুদের নিয়ে তাঁবুর প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে রইল| 28 তখন মোশি বলল, “আমি তোমাদের প্রমাণ করে দেখাবো যে প্রভুই আমাকে এইসব কাজ করার জন্য পাঠিয়েছেন এবং আমি এসব নিজের ইচ্ছানুসারে করিনি| 29 এই লোকরা এখানে মারা যাবে| কিন্তু তারা যদি স্বাভাবিবকভাবে মারা যায়, যেভাবে লোকরা সবসময় মারা যায় তাহলে তা প্রমাণ করবে যে, প্রভু আমাকে প্রকৃতই পাঠান নি| 30 কিন্তু যদি প্রভু এই লোকদের মৃত্যু একটু ভিন্নভাবে ঘটান অর্থাত্ একটু নতুনভাবে তাহলে তোমরা জানবে যে এই লোকরা সত্যই প্রভুকে অবজ্ঞা করেছিল| এটাই হল প্রমাণ: ধরনী বিদীর্ণ হয়ে যাবে এবং এই সমস্ত লোককে গ্রাস করবে| তারা জীবিতাবস্থায তাদের কবরে নেমে যাবে| এবং এই সব লোকদের অধিকৃত যাবতীয় জিনিসপত্র তাদের সঙ্গেই তলিযে যাবে|” 31 যখন মোশি এই কথাগুলো বলা শেষ করল, লোকদের পাযের তলার মাটি ফেটে গেল| 32 মনে হল যেন পৃথিবী তার মুখটি খুলে তাদের গ্রাস করল| কোরহের সমস্ত লোকরা, তাদের পরিবার এবং তাদের অধিকৃত যাবতীয় দ্রব্যসামগ্রী পৃথিবীর নীচে চলে গেল| 33 ঐসব লোকরা জীবন্ত অবস্থাতেই তাদের কবরে গেল| তাদের অধিকৃত সকল দ্রব্যসামগ্রীই তাদের সঙ্গে মাটির তলায় চলে গেল| এরপর পৃথিবী তাদের ওপরে মুখ বন্ধ করল| তারা বিনষ্ট হল এবং সমাজ থেকে চিরকালের জন্যই চলে গেল| 34 ইস্রায়েলের লোকরা এই মরনোন্মুখ মানুষগুলোর আর্তনাদ শুনতে পেল| সেই কারণে তারা বিভিন্ন দিকে ছুটে পালাতে পালাতে বলল, “পৃথিবী আমাদেরও গ্রাস করবে!” 35 এরপর প্রভুর কাছ থেকে এক আগুন এসে যারা সুগন্ধি ধূপধূনোর নৈবেদ্য প্রদান করছিল, সেই 250 জন পুরুষকে ধ্বংস করল| 36 প্রভু মোশিকে বললেন, 37 “যাজক হারোণের পুত্র ইলীয়াসরকে বলো, যে আগুন এখনও শিখাহীন হয়ে জ্বলছে তার থেকে সমস্ত সুগন্ধি ধূপধূনোর পাত্রগুলো নিয়ে এসো| এই সুগন্ধি ধূপধূনোর পাত্রগুলি এখন পবিত্র| পাত্রগুলো পবিত্র কারণ তারা এই পাত্রগুলো ঈশ্বরকে প্রদান করেছিল| তাদের ধুনুচিগুলো নিয়ে হাতুড়ির সাহায্যে সমতল পাতে পরিণত কর| এরপর এই ধাতব চাদরটি বেদীর আচ্ছাদনের কাজে ব্যবহার করো| ইস্রায়েলের লোকদের জন্য এটি চিহ্ন, যাতে তারা সতর্ক হয়|” 38 39 সুতরাং যাজক ইলীযসর পিতলের তৈরী সেই ধুনুচিগুলো নিলেন| যারা মারা গিয়েছিল তারাই ঐ পাত্রগুলো এনেছিল| আর তারা তা পিটিযে বেদীকে ঢাকবার জন্য পাত প্রস্তুত করলেন| 40 মোশির মাধ্যমে প্রভু যে ভাবে আজ্ঞা দিয়েছিলেন, তিনি ঠিক সেভাবেই তা করলেন| এটি এমন একটি চিহ্নস্বরূপ হল যা ইস্রায়েলের লোকদের মনে রাখতে সাহায্য করবে যে কেবলমাত্র হারোণের পরিবারের কোনো ব্যক্তিই প্রভুর সামনে সুগন্ধি ধূপধূনো উত্সর্গ করতে পারে| এছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি যদি প্রভুকে সুগন্ধি ধূপধূনোর নৈবেদ্য প্রদান করেন তাহলে সেও কোরহ এবং তার অনুসরণকারীদের মতোই মারা যাবে| 41 পরদিন ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা মোশি এবং হারোণের বিরুদ্ধে অভিয়োগ করে বলল, “আপনারা প্রভুর লোকদের হত্যা করেছেন|” 42 আর ইস্রায়েলের লোকরা মোশি ও হারোণের বিরুদ্ধে একত্র হয়ে যখন সমাগম তাঁবুর দিকে তাকাল, তখন দেখল মেঘ সেটিকে ঢেকে দিয়েছে এবং সেখানে ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশিত হচ্ছে| 43 তারপর মোশি এবং হারোণ সমাগম তাঁবুর সামনে গেলেন| 44 প্রভু মোশিকে বললেন, 45 “ঐ লোকদের থেকে দূরে সরে যাও, যাতে আমি এখনই তাদের ধ্বংস করতে পারি|” তাতে মোশি এবং হারোণ মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ল| 46 তখন মোশি হারোণকে বলল, “ধুনুচি নিয়ে তাতে বেদী থেকে আগুন নিয়ে রাখো| এরপর এতে সুগন্ধি ধূপধূনো দাও এবং ঐ লোকদের কাছে তাড়াতাড়ি গিয়ে তাদের পবিত্র করো| কারণ প্রভু তাদের প্রতি খুবই ক্রুদ্ধ হয়ে আছেন| ইতিমধ্যেই রোগ ছড়াতে শুরু করেছে|” 47 সুতরাং হারোণ মোশির কথামতো কাজ করল| হারোণ সুগন্ধি ধূপধূনো ও আগুন এনে লোকদের মাঝখানে দৌড়ে গেল| কিন্তু লোকদের মধ্যে এর মধ্যেই অসুস্থতা শুরু হয়ে গিয়েছিল| এই কারণে হারোণ মৃত লোক এবং যারা জীবিত আছে তাদের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়াল| লোকদের শুচি করার জন্যে যা দরকার হারোণ ঠিক তাই করলেন এবং তাদের অসুস্থতা আর বাড়ল না| 48 49 কোরহের কারণে যাদের মৃত্যু হয়েছিল তাদের ছাড়াও আরও 14,700 জন লোক অসুস্থতার জন্য মারা গেল| 50 সুতরাং ঐ ভয়ঙ্কর অসুস্থতা আর এগোলো না এবং পরে হারোণ পবিত্র তাঁবুর প্রবেশপথে মোশির কাছে গিয়ে গেল|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে কথা বলো| বারোটি পরিবারগোষ্ঠী প্রত্যেকটির নেতার কাছ থেকে একটি করে মোট বারোটি হাঁটার লাঠি বা ছড়ি নিয়ে এসো| প্রত্যেক ব্যক্তির নাম তার লাঠির ওপরে লেখো| 3 লেবি গোষ্ঠীর লাঠির ওপরে হারোণের নাম লেখ| বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকটির নেতার জন্য অবশ্যই একটি করে লাঠি থাকবে| 4 এই লাঠিগুলোকে সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে সমাগম তাঁবুতে রাখো| এটাই সেই জায়গা যেখানে আমি তোমার সঙ্গে দেখা করি| 5 সত্যিকারের যাজক হওয়ার জন্য আমি একজনকে মনোনীত করব| আমি যে ব্যক্তিকে মনোনীত করব তার হাঁটার লাঠিতে নতুন পাতা গজাতে শুরু করবে| এই ভাবে আমি তোমার এবং আমার বিরুদ্ধে লোকদের অভিয়োগ করা বন্ধ করে দেবো|” 6 সুতরাং মোশি ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে কথা বলল| নেতারা প্রত্যেকেই তাকে লাঠি দিলেন| সেখানে মোট বারোটি লাঠি হল| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক নেতার কাছ থেকে পাওয়া একটি করে লাঠি সেখানে ছিল| লাঠিগুলোর মধ্যে একটি ছিল হারোণের| 7 চুক্তির তাঁবুতে প্রভুর সামনে মোশি লাঠিগুলো রেখে দিল| 8 পরদিন মোশি তাঁবুতে প্রবেশ করে হারোণের লাঠিটি দেখল| লেবি পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া এই লাঠিই ছিল একমাত্র লাঠি যাতে নতুন পাতা গজিযেছিল| সেই লাঠিটিতে শাখা প্রশাখা গজিযেছিল এবং বাদামও ফলেছিল| 9 সেই কারণে মোশি প্রভুর সেই স্থান থেকে সমস্ত লাঠিগুলো নিয়ে এল| মোশি ইস্রায়েলের লোকদের সেই লাঠিগুলো দেখালেন| তারা সকলেই লাঠিগুলো দেখল এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের লাঠিগুলো ফিরিযে নিয়ে গেল| 10 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “চুক্তি সিন্দুকের সামনে পবিত্র তাঁবুর ভেতরে পেছনদিকে হারোণের লাঠিটিকে রাখো| এই যে সব লোক, যারা সব সমযেই আমার বিরোধিতা করে তাদের জন্য এটি একটি সতর্কীকরণ| এতে আমার বিরুদ্ধে অভিয়োগ করা বন্ধ হয়ে যাবে যার ফলে আমি তাদের ধ্বংস করব না|” 11 সুতরাং মোশি প্রভুর আজ্ঞা অনুসারেই কাজ করল| 12 ইস্রায়েলের লোকরা মোশিকে বলল, “দেখ, আমরা মারা পড়তে বসেছি| আমরা শেষ হয়ে যাব| আমরা সকলেই ধ্বংস হয়ে যাব| 13 যে কোনোও ব্যক্তি প্রভুর পবিত্র তাঁবুর কাছে আসে সে মারা যায়| তবে কি আমরা সকলেই মারা যাবো?”
1 প্রভু হারোণকে বললেন, “পবিত্র স্থানের বিরুদ্ধে যে কোনোরকম ভুল কাজের জন্য তুমি, তোমার পুত্ররা এবং তোমার পিতার পরিবারের সকল ব্যক্তি দায়ী থাকবে| যাজকগণের বিরুদ্ধে যে কোনোরকম ভুল কাজের জন্যে তুমি এবং তোমার পুত্ররা দায়ী থাকবে| 2 তুমি তোমার পরিবারগোষ্ঠী থেকে অন্যান্য লেবীয় লোকদেরও নিয়ে এসো যাতে তারা তোমার সাথে য়োগ দিতে পারে| তুমি তোমার পুত্রদের সাথে যখন চুক্তির সিন্দুকের সাক্ষাতে উপস্থিত থাকবে তখন তারা তোমাদের সাহায্য করবে| 3 লেবি পরিবার থেকে আসা ঐসব লোকরা তোমার অধীনে থাকবে| পবিত্র তাঁবুতে প্রয়োজনীয় সব কাজই তারা করবে| কিন্তু তারা কোনো সমযেই পবিত্র স্থানের দ্রব্যসামগ্রীর কাছে অথবা বেদীর কাছে যাবে না| যদি তারা সেটা করে, তাহলে তারা মারা যাবে এবং তুমিও মারা যাবে| 4 তারা তোমাকে সঙ্গ দেবে এবং তোমার সঙ্গে কাজ করবে| সমাগম তাঁবুর তত্ত্বাবধানের জন্য তারা দায়ী থাকবে| পবিত্র তাঁবুতে অবশ্য করণীয কাজগুলো তারা করবে| এ ছাড়া অন্য কেউই ঐ জায়গায় আসতে পারবে না যেখানে তুমি আছো| 5 “পবিত্র স্থান এবং বেদীর তত্ত্বাবধান করার জন্য তুমি দাযবদ্ধ কারণ আমি ইস্রায়েলের লোকদের ওপরে আর ক্রুদ্ধ হতে চাই না| 6 ইস্রায়েলের লোকদের মধ্য থেকে আমি নিজে একমাত্র লেবীয় গোষ্ঠীভুক্তদেরই বেছে নিয়েছি| তারা তোমাদের কাছে উপহারস্বরূপ প্রভুর সেবা করার জন্য এবং সমাগম তাঁবুতে কাজ করার জন্য আমি তোমাদের কাছে তাদের দিয়েছি| 7 কিন্তু হারোণ, কেবলমাত্র তুমি এবং তোমার পুত্ররাই যাজক হিসাবে সেবা করতে পারো| কেবলমাত্র তুমিই বেদীর কাছে যেতে পারো| পবিত্রতম স্থানের পর্দার অভ্য়ন্তরে একমাত্র তুমিই প্রবেশ করতে পারো| আমি দানরূপে যাজকত্ব পদ তোমাদের দিয়েছি| অন্য যে কেউই আমার পবিত্র স্থানের কাছে আসবে তাকে অবশ্যই হত্যা করা হবে|” 8 এরপর প্রভু হারোণকে বললেন, “দেখ ইস্রায়েলের লোকরা আমাকে যে বিশেষ উপহারগুলো দিয়েছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমি নিজেই তোমাকে দিয়েছি| আমি তোমাকে সব পবিত্র উপহারসামগ্রী দেব যা ইস্রায়েলীয়রা আমাকে দেয| তুমি এবং তোমার পুত্ররা এইসব উপহার সামগ্রী ভাগ করে নেবে| সেগুলো চিরকাল তোমাদেরই থাকবে| 9 লোকরা উত্সর্গের জন্য জিনিসপত্র, শস্য নৈবেদ্য, পাপার্থক বলি এবং দোষার্থক বলির নৈবেদ্য নিয়ে আসবে| ঐসব নৈবেদ্য সব থেকে পবিত্র| সব থেকে পবিত্র নৈবেদ্য যে অংশ পোড়ানো হয় নি, সেখান থেকেই তোমার অংশ আসবে| ঐসব দ্রব্যসামগ্রী তোমার এবং তোমার পুত্রদের জন্য| 10 কেবলমাত্র অতি পবিত্র স্থানে তোমরা ঐসব দ্রব্য সামগ্রী ভক্ষণ কোরো| তোমার পরিবারের প্রত্যেক পুরুষ ঐসব দ্রব্যসামগ্রী খেতে পারবে, কিন্তু তুমি অবশ্যই মনে রাখবে যে, ঐসব নৈবেদ্যগুলো পবিত্র| 11 “এবং ইস্রায়েলের লোকরা দোলনীয় নৈবেদ্য স্বরূপ যে সব উপহারসামগ্রী আমাকে দেয, সেগুলোও তোমাদের| আমি তোমাকে, তোমার পুত্রদের এবং তোমার কন্যাদের এগুলো দিলাম| এটি তোমার অংশ| তোমার পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তি, যে শুচি সে এগুলো খেতে পারবে| 12 “তাদের ক্ষেতে উত্পন্ন প্রথম সবচেয়ে উত্কৃষ্ট অলিভ তেল, নতুন দ্রাক্ষারস, শস্য যা তারা আমার উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করে তা আমি তোমাদের দিলাম| 13 দেশের সমস্ত প্রথম ফসল যা তারা প্রভুর উদ্দেশ্যে নিয়ে আসে তা তোমাদের হবে| তোমার পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তি, যে শুচি সে এটি খেতে পারবে| 14 “ইস্রায়েলে যে সকল দ্রব্যসামগ্রী প্রভুকে দেওয়া হবে সেগুলো তোমারই| 15 “স্ত্রীলোকের প্রথম সন্তান এবং পশুর প্রথম সন্তান অবশ্যই প্রভুকে দান করতে হবে| সেই সন্তান তোমার হবে| যদি প্রথমজাত পশুটি অশুচি হয় তাহলে সেটিকে ফেরত নিয়ে যাওয়া হবে| যদি নৈবেদ্যটি শিশু হয়, তাহলে সেই শিশুটিকে অবশ্যই ফেরত নিয়ে আসতে হবে| 16 যখন শিশুটির বয়স এক মাস, তখন তারা অবশ্যই তার দাম দেবে| খরচ হবে 2 আউন্স রূপো| তুমি অবশ্যই সরকারী মাপকাঠি অনুযায়ীরূপো ওজন করবে| সরকারী মাপকাঠি অনুসারে এক শেকল হল 20 জিরাহ| 17 “কিন্তু তুমি প্রথমজাত গোরু মেষ অথবা ছাগলের মুক্তির জন্য কোনো মূল্য দেবে না| ঐ পশুরা পবিত্র বেদীর ওপরে তাদের রক্ত ছিটিয়ে দাও এবং তাদের চর্বি পোড়াও| এই নৈবেদ্য আগুনের সাহায্যে তৈরী| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে| 18 কিন্তু ঐসব পশুর মাংস তোমার| যেমন দোলনীয় নৈবেদ্যর বক্ষঃস্থল এবং অন্যান্য নৈবেদ্যর দক্ষিণ উরু তোমার| 19 লোকরা পবিত্র উপহারস্বরূপ যে সব দ্রব্যসামগ্রী প্রদান করে, আমি প্রভু হিসাবে সে সবই তোমাকে দিলাম| এটি তোমার প্রাপ্য় অংশ| আমি এইগুলো তোমাকে, তোমার পুত্রদের এবং তোমার কন্যাদের দিলাম| এই বিধি চিরকাল চলবে| এটি প্রভুর সঙ্গে একটি চুক্তি, যা কোনো সময়ই ভঙ্গ করা যাবে না| আমি তোমার কাছে এবং তোমার উত্তরপুরুষদের কাছে এই প্রতিশ্রুতি করলাম|” 20 প্রভু হারোণকে এও বললেন, “তুমি জমির কোনো অংশই পাবে না| অন্যান্য লোকরা যা অধিকারভুক্ত করে থাকে এমন কোনো কিছুই তুমি অধিকারভুক্ত করতে পারবে না| আমি, প্রভু তোমারই হবো| ইস্রায়েলের লোকরা সেই দেশ পাবে যা আমি তাদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম| কিন্তু আমিই তোমার অংশ ও অধিকার| 21 “ইস্রায়েলের লোকরা তাদের যা কিছু আছে তার এক দশমাংশ আমাকে দেবে| সুতরাং সেই এক দশমাংশ আমি লেবির সকল উত্তরপুরুষদের দিয়ে দিচ্ছি| সমাগম তাঁবুতে তারা যে সেবাকার্য় করেছে তার জন্যে এটি তাদের পারিশ্রমিক| 22 কিন্তু এখন থেকে সমাগম তাঁবুর কাছে ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকরা অবশ্যই যাবে না| যদি তারা সো করে, তবে তাদের অবশ্যম্প মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে| 23 লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা, যারা সমাগম তাঁবুতে কাজ করে তারা এর বিরুদ্ধে যে কোনোরকম পাপ কাজের জন্যে দায়ী| এটিই বিধি| এইটিই চিরকাল চলবে| আর এই লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে কোনো দেশই পাবে না| 24 কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তাদের যা কিছু আছে তার সব কিছুর এক দশমাংশ আমাকে দেবে| এবং আমি সেই এক দশমাংশ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের দেবো| সেই কারণেই লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের সম্পর্কে এই কথাগুলো আমি বলেছিলাম: ঐসব লোকরা কোনো দেশ পাবে না যা আমি ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছি|” 25 প্রভু মোশিকে বললেন, 26 “লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বলো, ইস্রায়েলের লোকরা, তাদের অধিকারে যা আছে, তার সবকিছুর এক দশমাংশ প্রভুকে দেবে| সেই এক দশমাংশ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের হবে| কিন্তু তোমরা অবশ্যই তার এক দশমাংশ প্রভুকে তাঁর নৈবেদ্য স্বরূপ প্রদান করবে| 27 ফসল কাটার পর যেমন শস্য এবং য়ন্ত্রের সাহায্যে দ্রাক্ষার রস বের করা হয় সেই রকমভাবে তোমার দাম তোমার পক্ষে গণনা করা হবে| 28 “এই ভাবে ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের মতো, তোমরাও প্রভুকে তোমার নৈবেদ্য প্রদান করবে| ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে যা দেন সেই এক দশমাংশ তুমি পাবে| এবং তারপর তুমি যাজক হারোণকে তার এক দশমাংশ দেবে| 29 যখন ইস্রায়েলের লোকরা তাদের অধিকারভুক্ত সবকিছুর এক দশমাংশ তোমাকে দেবে, তখন তুমি অবশ্যই তার মধ্য থেকে সর্বাপেক্ষা উত্কৃষ্ট এবং পবিত্রতম অংশটি বেছে নেবে| ঐটিই সেই এক দশমাংশ যা তুমি অবশ্যই প্রভুকে প্রদান করবে| 30 “সুতরাং লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বলো, “ইস্রায়েলের লোকরা ফসল কাটার পরে শস্যের এবং দ্রাক্ষারসের এক দশমাংশ তোমাদের দেবে| এরপর তোমরা তার থেকে সর্বাপেক্ষা উত্কৃষ্ট অংশটি প্রভুকে দেবে| 31 বাকী অংশটি তুমি এবং তোমার পরিবারের সদস্যরা খেতে পারবে| সমাগম তাঁবুতে তুমি যে কাজ করো তার জন্য এটি তোমার পারিশ্রমিক| 32 এবং যদি তুমি সব সময়ই সব থেকে উত্কৃষ্ট অংশটি প্রভুকে দিয়ে দাও, তাহলে তুমি কোনো সময়ই দোষী হবে না| তুমি ইস্রায়েলের লোকদের দেওয়া পবিত্র উপহারসামগ্রী কখনও অপবিত্র কোরো না, তাহলে তুমি মারা যাবে না|”
1 প্রভু, মোশি এবং হারোণকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের ঈশ্বর যে শিক্ষা দিয়েছিলেন, তার থেকেই আসছে এই বিধিগুলি| ইস্রায়েলের লোকদের বলো তারা যেন তোমাদের কাছে একটি নিখুঁত লাল গোরু নিয়ে আসে| গোরুটির শরীরে যেন অবশ্যই কোনো রকম আঘাতের চিহ্ন না থাকে এবং সেটি যেন কোনোদিন জোযাল না বয়ে থাকে| 3 সেই গোরুটিকে যাজক ইলীয়াসরের কাছে দিয়ে দাও| ইলীয়াসর সেই গোরুটিকে শিবিরের বাইরে নিয়ে যাবে এবং সেখানে এটি হত্যা করবে| 4 তখন যাজক ইলীয়াসর কিছুটা রক্ত তার আঙুলে নিয়ে তা পবিত্র তাঁবুর দিকে সাতবার ছিটিয়ে দেবে| 5 এরপর গোটা গোরুটিকে তার সামনে পোড়ানো হবে| গোরুটির চামড়া, মাংস, রক্ত এবং অন্ত্র সম্পূর্ণরূপে পোড়াতে হবে| 6 এরপর যাজক একটি এরস কাঠের কাঠি, একটি এসোবএবং কিছু লাল সুতো নেবে| যেখানে গোরুটি পুড়ছে সেই আগুনে ঐসব দ্রব্যসামগ্রী ছুঁড়ে দেবে| 7 এরপর যাজক স্নান করবে এবং নিজের বস্ত্রাদি জলে ধুয়ে ফেলবে| এরপর সে শিবিরে ফিরে আসতে পারবে| যাজক সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 8 যে ব্যক্তি গোরুটি পুড়িয়েছে সেও স্নান করবে এবং নিজের বস্ত্রাদি জলে ধুয়ে ফেলবে| সেও সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অপবিত্র থাকবে| 9 “এরপর একজন শুচি ব্যক্তি সেই গোরুর ছাই সংগ্রহ করবে| সে শিবিরের বাইরে পরিষ্কার জায়গায় সেই ছাই রাখবে| যখন লোকরা শুচি হওয়ার জন্য এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আযোজন করবে, সে সময় এই ছাই ব্যবহৃত হবে| কোনো ব্যক্তির পাপ দূরীকরণের জন্যও এই ছাই ব্যবহৃত হবে| 10 “যে ব্যক্তি গোরুর ছাই সংগ্রহ করেছিল সে অবশ্যই তার বস্ত্রাদি ধুয়ে ফেলবে| সেও সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে|“এই নিয়ম চিরকাল চলবে| ইস্রায়েলের নাগরিকদের জন্য এই নিয়ম এবং তোমাদের সঙ্গে যে বিদেশীরা বাস করছে তাদের জন্যেও এই একই নিয়ম বলবত্ থাকবে| 11 যদি কোনো ব্যক্তি কোনো মৃতদেহ স্পর্শ করে, তাহলে সে সাতদিন পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 12 সে অবশ্যই তৃতীয় দিনে এবং পুনরায সপ্তম দিনে বিশেষ জলে নিজেকে পরিষ্কার করবে| যদি সে তা না করে, তাহলে সে অশুচিই থেকে যাবে| 13 যদি একজন ব্যক্তি কোনো মৃতদেহ স্পর্শ করে তবে সেই ব্যক্তি অশুচি| যদি সেই ব্যক্তি নিজেকে শুচি না করে পবিত্র তাঁবুতে যায়, তাহলে সেই তাঁবুটিও অশুচি হয়ে যাবে| সুতরাং সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের থেকে পৃথক করে রাখা হবে| যদি কোনো অশুচি ব্যক্তির ওপরে পবিত্র জল ঢেলে না দেওয়া হয়, তাহলে সেই ব্যক্তি অশুচিই থেকে যাবে| 14 “এই নিয়ম মানতে হবে যখন তারা তাদের তাঁবুতে মারা যায়| যদি কোনো ব্যক্তি তার তাঁবুতে মারা যায় তাহলে তাঁবুর প্রত্যেক ব্যক্তি অশুচি হবে| তারা সাতদিনের জন্য অশুচি থাকবে| 15 এবং ঢাকা না দেওয়া প্রত্যেকটি বযাম অথবা পাত্র অশুচি হয়ে যাবে| 16 যদি কোনো ব্যক্তি মৃতদেহ স্পর্শ করে, তাহলে সেই ব্যক্তি সাতদিন অশুচি থাকবে| মৃতদেহটি যদি বাইরে মাঠে থাকে অথবা সেই ব্যক্তি যদি যুদ্ধে মারা গিয়ে থাকে তাহলেও এটি প্রয়োজ্য| এছাড়াও যদি কোন ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির হাড় স্পর্শ করে, তাহলে সেই ব্যক্তি সাতদিনের জন্য অশুচি থাকবে| 17 “সুতরাং সেই ব্যক্তিকে আবার শুচি করার জন্যে তুমি অবশ্যই পোড়ানো গোরুর ছাই ব্যবহার করবে| একটি বযামের মধ্যেকার ছাইযের ওপর দিয়ে টাটকা স্রোতের জল ভরো| 18 একজন শুচি ব্যক্তি একটি এসোব নিয়ে সেটিকে জলে ডোবাবে| এরপর সে এটিকে তাঁবুর ওপর, তাঁবুর পাত্রগুলিতে এবং তাঁবুতে যে সব লোকরা আছে তাদের ওপরে ছিটিয়ে দেবে| যে কেউই মৃত ব্যক্তির শরীর স্পর্শ করে তার প্রতি তুমি অবশ্যই এটি করবে| যে কেউ যুদ্ধে মৃত কোনো ব্যক্তির শরীর স্পর্শ বা কোনো মৃত ব্যক্তির হাড় স্পর্শ করে তাদের ক্ষেত্রেও তুমি অবশ্যই এটি কর| 19 “এরপর তৃতীয় দিনে এবং আবার সপ্তম দিনে একজন শুচি ব্যক্তি অবশ্যই একজন অশুচি ব্যক্তির ওপরে এই জল ছিটিয়ে দেবে| সপ্তম দিনে সেই ব্যক্তি শুচি হবে| সে অবশ্যই জলে তার কাপড়চোপড় ধোবে| সন্ধ্যাবেলায সে শুচি হবে| 20 “যদি কোনো ব্যক্তি অশুচি হয়ে যায় এবং নিজেকে শুচি না করে, তবে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের থেকে পৃথক রাখা হবে কারণ সে ঈশ্বরের পবিত্র স্থানকে অশুচি করেছে| সেই ব্যক্তির ওপরে সেই বিশেষ জল ছিটোনো হয় নি তাই সে শুচি হয় নি| 21 এই নিয়ম তোমাদের জন্য চিরকাল চলবে| যে ব্যক্তি সেই বিশেষ জল ছিটোয সে অবশ্যই তার বস্ত্রাদিও ধোবে| যে কোনো ব্যক্তি সেই বিশেষ জল স্পর্শ করবে সে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে| 22 যদি কোনো অশুচি ব্যক্তি অন্য কাউকে স্পর্শ করে, তাহলে সেই ব্যক্তিও অশুচি হয়ে যাবে| সেই ব্যক্তি সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অশুচি থাকবে|”
1 ইস্রায়েলের লোকরা প্রথম মাসে, সীন মরুভূমিতে পৌঁছালো| প্রথমে তারা কাদেশে পৌঁছাল, সেখানে মরিযম মারা গেলেন এবং তাকে সেখানেই কবর দেওয়া হয়েছিল| 2 সেই জায়গায় লোকদের জন্য পর্য়াপ্ত পরিমাণ জল ছিল না, সুতরাং মোশি এবং হারোণের কাছে অভিয়োগ করার জন্যে লোকরা এক জায়গায় মিলিত হয়েছিল| 3 লোকরা মোশির সঙ্গে তর্ক করে বলল, “এও হলে ভাল হতো যদি আমরা আমাদের ভাইদের মতো প্রভুর সামনে মারা যেতাম| 4 আপনি কেন প্রভুর লোকদের এই মরুভূমিতে নিয়ে এসেছিলেন? আপনার ইচ্ছে কি এটাই যে আমাদের এবং আমাদের সঙ্গে থাকা পশুদের এখানেই মৃত্যু হোক? 5 আপনি কেন আমাদের মিশর থেকে এই খারপ জায়গায় নিয়ে এসেছেন? এখানে কোনো শস্য নেই| এখানে কোনো ডুমুর, দ্রাক্ষা অথবা ডালিম ফল নেই এবং পানের জন্য কোনো জলও নেই|” 6 সুতরাং মোশি এবং হারোণ লোকদের কাছ থেকে বিদায নিয়ে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে গেলেন| তারা মাটিতে উপুড় হয়ে পড়লে প্রভুর মহিমা তাঁদের সামনে প্রকাশিত হল| 7 প্রভু মোশিকে বললেন, 8 “হাঁটার বিশেষ লাঠিটি নিয়ে এসো| হারোণ এবং লোকদের নিয়ে সেই পাহাড়ের সামনে এসো| সবার সামনে ঐ পাহাড়কে বলো, তখন ঐ পাহাড় থেকে জল প্রবাহিত হবে| তুমি সেই জল লোকদের এবং তাদের পশুদের দিতে পারবে|” 9 লাঠিটি পবিত্র তাঁবুতে প্রভুর সামনে ছিল| প্রভু যেভাবে বলেছিলেন, মোশি সেই ভাবেই লাঠিটি নিয়ে এলেন| 10 মোশি এবং হারোণ পাহাড়ের সামনে সমস্ত লোকদের সমবেত হতে বললেন| তখন মোশি বললেন, “তোমরা সকল সমযেই অভিয়োগ করছ| এখন আমার কথা শোন| আমরা কি তোমাদের জন্য এই পাহাড় থেকে জল বের করবো?” 11 এরপর মোশি তার হাত তুললেন এবং পাহাড়ে দুবার আঘাত করলেন| পাহাড় থেকে জল বেরোতে শুরু করল| লোকরা এবং তাদের পশুরা জল পান করল| 12 কিন্তু প্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “ইস্রায়েলের সব লোকর সাক্ষাতে তুমি আমার প্রতি সম্মান দেখাও নি| তুমি ইস্রায়েলের লোকদের দেখাও নি যে জল বের করার ক্ষমতা আমার থেকেই এসেছে| তুমি লোকদের দেখাও নি যে তুমি আমার প্রতি বিশ্বাস রেখেছো| আমি ঐসব লোকদের সেই দেশটি দেব যে দেশটি আমি তাদের দেব বলে শপথ করেছিলাম, কিন্তু তুমি তাদের সেই দেশে নিয়ে যেতে নেতৃত্ব দেবে না|” 13 এই জায়গাটিকে বলা হতো মরীবার জল| এটিই সেই জায়গা যেখানে ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর সঙ্গে বিবাদ করেছিল এবং এটিই সেই জায়গা যেখানে প্রভু তাদের দেখিয়েছিলেন যে তিনি পবিত্র| 14 কাদেশে থাকাকালীন মোশি ইদোমীয় রাজার কাছে বার্তাসহ কযেকজন লোককে পাঠালেন| বার্তায বলা ছিল: “আপনার ভাইযেরা অর্থাত্ ইস্রায়েলের লোকরা, আপনাকে বলছে: আমাদের যে সব সমস্যা আছে সে সম্পর্কে আপনি সবই জানেন| 15 বহু বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা মিশরে গিয়েছিলেন এবং আমরা সেখানে বহু বছর বাস করেছিলাম| মিশরের লোকরা আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি নিষ্ঠুর ছিলেন| 16 কিন্তু আমরা প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছিলাম| প্রভু আমাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন এবং আমাদের সাহায্যের জন্য একজন দূত পাঠিয়েছিলেন| প্রভু আমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছেন| “এখন আমরা আপনার দেশের প্রান্তে কাদেশে আছি| 17 দয়া করে আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিন| আমরা কোনো শস্য ক্ষেত অথবা কোনো দ্রাক্ষাক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাবো না| আমরা আপনাদের কোনো জলাশয থেকে জল পান করবো না| আমরা রাজপথ বরাবর যাতাযাত করবো| আমরা ঐ রাস্তা থেকে কোনো সময়ই ডানদিকে অথবা বাঁদিকে যাবো না| যতক্ষণ পর্য়ন্ত আমরা আপনার দেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, ততক্ষণ পর্য়ন্ত আমরা এই রাস্তার ওপরেই থাকবো|” 18 কিন্তু ইদোমীয রাজা উত্তর দিলেন, “তোমরা আমার দেশের মধ্য দিয়ে যেতে পারবে না| তোমরা আমার দেশের মধ্য দিয়ে যাবার চেষ্টা করলে আমরা তরবারি নিয়ে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবো|” 19 ইস্রায়েলের লোকরা উত্তর দিল, “আমরা প্রধান রাস্তা দিয়ে যাবো| যদি আমাদের পশুরা আপনাদের কোনো জল পান করে, আমরা তার জন্য মূল্য দেবো| আমরা কেবলমাত্র আপনার দেশের মধ্য দিয়ে পাযে হেঁটে যেতে চাই| আর কিছু নয়|” 20 কিন্তু ইদোম আবার উত্তর দিলেন, “আমরা তোমাদের আমাদের দেশের মধ্য দিয়ে আসার অনুমতি দেবো না|”এরপর ইদোমীয় রাজা এক বিশাল এবং শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী জড়ো করলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য গেলেন| 21 ইদোমীয় রাজা তার দেশের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের যাওয়া নিষেধ করলেন| তাই ইস্রায়েলের লোকরা ঘুরে অন্য পথে গেল| 22 ইস্রায়েলের লোকরা কাদেশ থেকে হোর পর্বতের দিকে যাত্রা করল| 23 হোর পর্বত ছিল ইদোম সীমানার কাছে| এখানেই প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন, 24 “হারোণের মৃত্যুর সময় হয়েছে এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের কাছে যাওয়ার সময় হয়েছে| যে দেশটা আমি ইস্রায়েলের লোকদের দেব বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম, হারোণ সেই দেশে প্রবেশ করবে না| মোশি, আমি একথা তোমাকেও বললাম, কারণ তুমি এবং হারোণ দুজনেই মরীবার জলের ধারে দেওয়া আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচরণ করেছিলে| 25 “এখন হারোণ এবং তার পুত্র ইলীয়াসরকে হোর পর্বতের ওপরে নিয়ে এসো| 26 হারোণের বিশেষ বস্ত্র তার কাছ থেকে নিয়ে এসো এবং সেই বস্ত্রাদি তার পুত্র ইলীয়াসরকে পরিযে দাও| সেখানে পর্বতের ওপরে হারোণের মৃত্যু হবে| সে তার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবে|” 27 মোশি প্রভুর আজ্ঞা পালন করলেন| মোশি, হারোণ এবং ইলীয়াসর হোর পর্বতের ওপরে গেলেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোক তাদের সেখানে যেতে দেখল| 28 মোশি হারোণের বিশেষ পোশাক খুলে নিলেন এবং হারোণের পুত্র ইলীয়াসরকে সেই সব পোশাক পরিযে দিলেন| এরপর পর্বতের চূড়ায় হারোণ মারা গেলে মোশি এবং ইলীয়াসর পর্বত থেকে নেমে এলেন| 29 ইস্রায়েলের সকল লোক হারোণের মৃত্যুর খবর জানল| এই কারণে ইস্রায়েলের প্রত্যেক ব্যক্তি 30 দিন শোক পালন করল|
1 কনানীয় রাজার নাম ছিলো অরাদ| তিনি নেগেভে বাস করতেন| রাজা অরাদ শুনেছিলেন, যে, ইস্রায়েলের লোকরা অথারীম যাওয়ার পথ ধরে এগিয়ে আসছে| এই কারণে রাজা বেরিয়ে এসে ইস্রায়েলের লোকদের ওপর আক্রমণ করলেন| অরাদ কযেকজন লোককে বন্দী করে রাখলেন| 2 তখন ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর কাছে এক বিশেষ শপথ করে বললেন: “প্রভু দয়া করে এইসব লোকদের পরাজিত করতে আমাদের সাহায্য করুন| যদি আপনি এটা করেন তাহলে আমরা তাদের শহরগুলো আপনাকে দেবো| আমরা তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করবো|” 3 প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের কথা শুনলেন এবং কনানীয লোকদের পরাজিত করার জন্য প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের সাহায্য করলেন| ইস্রায়েলীয়রা কনানীযদের এবং তাদের শহরগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছিল| এই কারণে ঐ জায়গাটির নাম রাখা হল হর্মা| 4 ইস্রায়েলের লোকরা হোর পর্বত ত্যাগ করে সূফ সাগরে যাওয়ার পথ ধরে এগোলো| ইদোমের চারদিকে ঘোরার জন্য তারা এটা করল| কিন্তু লোকরা অধৈর্য়্য় হল| 5 তারা প্রভু এবং মোশির বিরুদ্ধে অভিয়োগ করতে শুরু করল| লোকরা বলল, “কেন তুমি আমাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছো? আমরা এখানে মরুভূমিতে মারা যাবো| এখানো কোনো রুটি নেই! জল নেই! আর আমরা এই সাংঘাতিক খাদ্যকে ঘৃণা করি|” 6 এই কারণে প্রভু লোকদের মধ্যে বিষাক্ত সাপ পাঠালেন| সাপগুলো লোকদের দংশন করলে ইস্রায়েলের বহু সংখ্য়ক লোক মারা গেল| 7 তখন লোকরা মোশির কাছে এসে বলল, “আমরা জানি যে আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে এবং আপনার বিরুদ্ধে কথা বলে পাপ করেছি| প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন যেন তিনি সাপগুলোকে ফিরিযে নিয়ে যান|” সুতরাং মোশি লোকদের জন্য প্রার্থনা করলেন| 8 প্রভু মোশিকে বললেন, “একটি পিতলের সাপ তৈরী করো এবং এটিকে একটি খুঁটির ওপরে রাখো| কোনো ব্যক্তিকে সাপে কামড়ালে যদি সেই ব্যক্তি খুঁটির ওপরের পিতলের সাপটির দিকে তাকায তাহলে সে ব্যক্তি মারা যাবে না|” 9 মোশি প্রভুর আদেশ পালন করলেন| তিনি একটি পিতলের সাপ তৈরী করে সেটিকে খুঁটির ওপরে রাখলেন| এরপর যখনই কোন মানুষকে সাপে দংশন করত, তখনই সে খুঁটির ওপরের পিতলের সাপটির দিকে তাকাতো আর বেঁচে যেতো| 10 ইস্রায়েলের লোকরা ঐ জায়গা ছেড়ে ওবোতে শিবির স্থাপন করল| 11 এরপর তারা ওবোত ত্যাগ করে মোয়াবের পূর্বদিকের মরুভূমিতে ইয অবারীমে শিবির স্থাপন করল| 12 তারা সেই জায়গাও পরিত্যাগ করে সেরদ উপত্যকায শিবির স্থাপন করল| 13 এরপর তারা সরে গিয়ে মরুভূমিতে অর্ণোন নদীর অপর পারে শিবির স্থাপন করল| এই নদীটি অম্মোনীয় সীমান্তে শুরু হয়েছিল| উপত্যকা হল মোয়াব এবং ম্পমোরীযের মধ্যে সীমারেখা| 14 এই কারণে এই কথাগুলো লেখা হয়েছে প্রভুর যুদ্ধ সংক্রান্ত পুস্তকে:“...এবং শূফাতে বাহেব, আর অর্ণোনের উপত্যকাগুলি 15 এবং উপত্যকাগুলির পাশের পর্বতমালা, যা আর শহরের দিকে চলে গেছে| এই জায়গাগুলি মোয়াবের সীমান্তে অবস্থিত|” 16 ইস্রায়েলের লোকরা সেই জায়গা ছেড়ে বেরের দিকে যাত্রা করল| এই জায়গাটিতে কুযো ছিল| এটিই সেই জায়গা যেখানে প্রভু মোশিকে বললেন, “সমস্ত লোকদের একত্রে এখানে নিয়ে এসো, আমি তাদের জল দেবো|” 17 তখন ইস্রায়েলের লোকরা এই গানটি গাইল:“কুযো তুমি ঝর্ণা হয়ে ওঠো| তোমরা এই নিয়ে গান ধরো| 18 মহান মানুষরা কুযোটি খুঁড়েছিলেন| গুরুত্বপূর্ণ নেতারা কুযোটি খুঁড়েছিলেন| তাঁদের নিজেদের দণ্ড আর হাঁটার লাঠি দিয়ে কুযোটি খুঁড়েছিলেন| কুযোটি মরুভূমিতে একটি উপহার|এই কারণে লোকরা সেই কুযোর নাম দিল, “মত্তানায|” 19 লোকরা মত্তানায থেকে নহলীযেল পর্য়ন্ত গেল| এরপর তারা নহলীযেল থেকে বামোত্ পর্য়ন্ত গেল| 20 বামোত্ থেকে তারা মোয়াবের উপত্যকা পর্য়ন্ত গেল| এখানে পিস্গা পর্বতের চূড়া মরুভূমির ওপরে দেখা যায়| 21 ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের কাছে ইস্রায়েলের লোকরা কযেকজন বার্তাবাহককে পাঠাল| সেই লোকরা রাজাকে বলল, 22 “আমাদের আপনার দেশের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করার অনুমতি দিন| আমরা কোনো শস্য অথবা দ্রাক্ষার ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাবে| না| আমরা আপনার কোনো কুযো থেকে জল পান করবো না| আপনার দেশের সীমা অতিক্রম না করা পর্য়ন্ত আমরা রাজপথ ছাড়া অন্য কোন রাস্তা দিয়েই যাবো না|” 23 কিন্তু রাজা সীহোন তাঁর দেশের মধ্য দিয়ে লোকদের যাওয়ার অনুমতি দিলেন না| রাজা তাঁর সৈন্যবাহিনীকে এক জায়গায় একত্রিত করে ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য মরুভূমির দিকে অগ্রসর হলেন| রাজার সৈন্যরা য়হস নামে একটি জায়গায় ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল| 24 কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা রাজাকে হত্যা করল| এরপর অর্ণোন নদী থেকে য়ব্বোক নদী পর্য়ন্ত জায়গা তারা অধিকার করল| ইস্রায়েলের লোকরা অম্মোন সীমানা পর্য়ন্ত অধিকার করল| অম্মোনীয়দের দ্বারা সীমানা খুবই শক্তভাবে সুরক্ষিত থাকার জন্যে তারা সেই সীমানা পর্য়ন্ত গিয়ে থেমে গেল| 25 ইস্রায়েলের লোকরা ইমোরীয়দের সমস্ত শহরগুলোকে দখল করল এবং সেগুলিতে বসবাস করতে শুরু করল| উপরন্তু তারা হিষবোন শহর এবং তার আশেপাশের ছোটো ছোটো শহরগুলোকেও অধিকার করল| 26 ইমোরীয়দের রাজা সীহোন হিষ্বোন শহরেই বাস করতেন| অতীতে মোয়াবের রাজার সঙ্গে সীহোন যুদ্ধ করে অর্ণোন নদী পর্য়ন্ত সমস্ত জায়গা অধিকার করেছিল| 27 এই কারণেই গায়করা গেয়ে থাকেন:হিষ্বোন এস এবং হিষ্বোন শহরকে আবার তৈরী কর| সীহোনের শহরটিকে শক্ত কর! 28 হিষ্বোনে এক আগুন শুরু হয়েছিল| সেই আগুন সীহোনের শহরেও উদ্ভুত হয়েছিল| মোয়াবের আর নামে শহরটি সেই আগুনে ভস্মীভূত হয়েছিল| অর্ণোন নদীর ওপরের পর্বতটিকেও সেই আগুন পুড়িয়ে দিয়েছে| 29 মোয়াব, ধিক্ তোমাকে! কমোশ দেবতার লোকরা, তোমরা হেরে গেছ! তার ছেলেরা পালিয়ে গেল| ইমোরীয়দের রাজা সীহোন তার কন্যাদের জেলে বন্দী করল| 30 কিন্তু আমরা সেই ইমোরীয়দের পরাজিত করলাম| হিষ্বোন থেকে দীবোন পর্য়ন্ত, মেদবার কাছে নাশিম থেকে নোফঃ পর্য়ন্ত তাদের শহরগুলোকেও আমরা ধ্বংস করেছি| 31 এই কারণে ইস্রায়েলের লোকরা ইমোরীয়দের দেশে তাদের শিবির স্থাপন করল| 32 মোশি যাসের শহরটিকে অনুসন্ধানের জন্য কযেকজন গুপ্তচর পাঠালেন| তারপরে ইস্রায়েলের লোকরা এটিকে দখল করল| তারা শহরটির আশেপাশের ছোটোখাটো শহরগুলোকেও অধিকার করল| ইস্রায়েলের লোকরা সেখানে বসবাসকারী ইমোরীয়দের সেই জায়গা ত্যাগ করতে বাধ্য করল| 33 এরপর ইস্রায়েলের লোকরা বাশনের অভিমুখে সড়কপথে ভ্রমণ করল| বাশনের রাজা ওগ তাঁর সৈন্যদের সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের সম্মুখীন হওয়ার জন্য কুচকাওযাজ করে অগ্রসর হলেন| ইদ্রিযী নামে একটি জায়গায় তিনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন| 34 কিন্তু প্রভু মোশিকে বললেন, “ঐ রাজা সম্পর্কে ভীত হযো না| আমি তার সমস্ত সৈন্য এবং তার সম্পূর্ণ দেশ তোমার হাতে তুলে দেব| ইমোরীয়দের রাজা সীহোন, যিনি হিষ্বোনে বাস করতেন তার সঙ্গে তুমি যা করেছিলে এই রাজার সঙ্গেও তুমি সেটাই করো|” 35 সুতরাং ইস্রায়েলের লোকরা ওগ এবং তার সৈন্যদের পরাজিত করল| তারা তাঁকে তার পুত্রদের এবং তাঁর সৈন্যদের হত্যা করল| এরপর ইস্রায়েলের লোকরা তাঁর দেশ অধিকার করল|
1 এরপর ইস্রায়েলের লোকরা মোয়াবের যর্দন উপত্যকার দিকে এগোতে শুরু করল| যিরীহো থেকে অপরপারে যর্দন নদীর কাছে তারা শিবির স্থাপন করল| 2 ইমোরীয়দের লোকদের সঙ্গে ইস্রায়েলের লোকরা যা যা করেছিল, সিপ্পোরের পুত্র বালাক তার সমস্তটাই দেখেছিলেন| মোয়াবের রাজা খুবই ভয় পেয়েছিলেন, কারণ সেখানে ইস্রায়েলের লোকসংখ্যা ছিল প্রচুর| মোয়াব উদ্বিগ্ন হল| 3 4 মোয়াবের রাজা মিদিযনের নেতাদের বললেন, “গরু যেভাবে মাঠের সমস্ত ঘাস খেযে ফেলে, ঠিক সেভাবেই এই বিশাল জনগোষ্ঠী আমাদের চারপাশের সমস্ত কিছুই ধ্বংস করে দেবে|”এই সময় সিপ্পোরের পুত্র বালাক মোয়াবের রাজা ছিলেন| 5 বিযোরের পুত্র বিলিয়মকে ডাকার জন্য তিনি কযেকজন লোক পাঠালেন| ফরাত্ নদীর কাছে পগোর নামে একটি জায়গায় বিলিয়ম ছিলেন| এম্পখানেম্প বিলিয়মের স্বজাতীযরা বাস করতো| এই ছিল বালাকের বার্তা: “মিশ থেকে এক নতুন জাতির লোকরা এসেছে| সেখানে তাদের সংখ্যা এতো বেশী যে সমস্ত দেশটা ভরে যাবে| তারা আমাদের পরেই শিবির স্থাপন করেছে| 6 আপনি এসে আমাকে সাহায্য করুন| এই লোকদের অভিশাপ দিন কারণ এরা আমার চেয়ে শক্তিশালী| আমি জানি আপনি যদি কোনো ব্যক্তিকে আশীর্বাদ করেন তাহলে সে আশীর্বাদ পায় এবং আপনি যদি কোনো ব্যক্তিকে অভিশাপ দেন তবে সে শাপগ্রস্ত হয়| সুতরাং আপনি আসুন এবং এই সমস্ত লোকদের অভিশাপ দিন| হতে পারে, আমি হয়তো তাদের আঘাত করে আমার দেশ থেকে দূর করে দিতে পারবো|” 7 মোয়াব এবং মিদিযনের নেতারা বিলিয়মের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন| তার কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে তাদের সঙ্গে টাকা নিয়ে গেলেন এবং তাকে বালাকের প্রেরিত বার্তাটি বললেন| 8 বিলিয়ম তাদের বললেন, “এখানে এক রাত্রির জন্য থাকো| আমি প্রভুর সঙ্গে কথা বলবো এবং তিনি আমাকে যে উত্তর দেবেন তা আমি তোমাদের বলবো|” সুতরাং সেই রাত্রে মোয়াবের নেতারা বিলিয়মের সঙ্গেই সেখানে থাকলেন| 9 ঈশ্বর বিলিয়মের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার সঙ্গের এই সমস্ত লোকরা কারা?” 10 বিলিয়ম ঈশ্বরকে বললেন, “মোয়াবের রাজা, সিপ্পোরের পুত্র বালাক আমাকে একটি সংবাদ দেওয়ার জন্য এদের পাঠিয়েছেন| 11 এই সেই বার্তা: “মিশর থেকে এক নতুন জাতি এসেছে| সেখানে তাদের সংখ্যা এতো বেশী যে তারা সমস্ত দেশটাকে ভরে দেবে| সুতরাং আপনি আসুন এবং এই সমস্ত লোকদের অভিশাপ দিন| তাহলে হয়তো আমি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সক্ষম হবো এবং তাদের আমার দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করতে পারবো|” 12 কিন্তু ঈশ্বর বিলিয়মকে বললেন, “তুমি অবশ্যই এদের সঙ্গে যাবে না| ওসব লোকর বিরুদ্ধে তোমার কথা বলা উচিত্ হবে না কারণ তারা আমার আশীর্বাদ প্রাপ্ত লোক|” 13 পরদিন সকালে উঠে বিলিয়ম বালাকের প্রেরিত নেতাদের বললেন, “তোমরা তোমাদের নিজেদের দেশে ফিরে যাও| প্রভু আমাকে তোমাদের সঙ্গে যেতে দেবেন না|” 14 সুতরাং মোয়াবের নেতারা বালাকের কাছে ফিরে গিয়ে তাকে এই সব কথা জানালেন| তাঁরা বললেন, “বিলিয়ম, আমাদের সঙ্গে আসতে অস্বীকার করেছেন|” 15 সুতরাং বালাক বিলিয়মের কাছে প্রথমবারের থেকেও বেশী লোক পাঠালেন| প্রথমবার তিনি যাদের পাঠিয়েছিলেন তাদের থেকেও এবারের নেতারা ছিলেন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ| 16 তাঁরা বিলিয়মের কাছে গিয়ে বললেন: “সিপ্পোরের পুত্র বালাক আপনাকে এই কথা বলেছেন: দয়া করে এখানে আসুন এবং কোন কিছুই যেন আমার কাছে আপনার আসা থামিয়ে না দেয| 17 আমি আপনাকে প্রচুর পারিশ্রমিক দেবো এবং আপনি যা বলবেন আমি তাই-ই করব| আমার জন্যে আপনি আসুন এবং এসে এই লোকদের বিরুদ্ধে কথা বলুন|” 18 বিলিয়ম বালাকের প্রেরিত দূতকে তার উত্তর জানিয়ে দিয়ে বললেন, “আমি আমার প্রভু ঈশ্বরকে অবশ্যই মান্য করবো| আমি তাঁর আদেশের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করতে পারি না| আমি বড় বা ছোট কোনো কাজই করবো না যদি না প্রভু আমাকে সেই কাজ করার অনুমতি দেন| রাজা বালাক যদি তার রূপো এবং সোনা খচিত সুন্দর প্রাসাদটি আমাকে দিয়ে দেন তাহলেও আমি প্রভুর আদেশের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করবো না| 19 কিন্তু তোমরা অন্যান্যদের মতোই আজকের রাত্রিটা এখানে থাকতে পারো| তাহলে এই রাত্রিকালের মধ্যেই প্রভু আমাকে যা বলতে চান তা জানতে পারবো|” 20 সেই রাত্রে ঈশ্বর বিলিয়মের কাছে এসে বললেন, “এই সমস্ত লোকরা তাদের সঙ্গে যাওয়ার কথা বলার জন্য পুনরায এসেছে| সুতরাং তুমি তাদের সঙ্গে যেতে পারো| কিন্তু আমি তোমাকে যা করতে বলবো তুমি কেবলমাত্র সেই কাজই করবে|” 21 পরদিন সকালে বিলিয়ম উঠে তাঁর গাধা সাজিযে মোয়াবের নেতাদের সঙ্গে গেলেন| 22 বিলিয়ম তার গাধায চড়েই যাচ্ছিলেন| তাঁর সঙ্গে তাঁর দুজন ভৃত্য ছিল| কিন্তু বিলিয়মের গমনে ঈশ্বর ক্ষুব্ধ হলেন| তাই বিলিয়মের সামনে রাস্তার ওপরে প্রভুর দূত দাঁড়ালেন, যেন বিলিয়মের যাওয়া বন্ধ করা যায়| 23 বিলিয়মের গাধা প্রভুর দূতকে রাস্তায় তরবারি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল| সেইজন্যে গাধাটি রাস্তা থেকে সরে এসে মাঠের মধ্যে চলে গেল| বিলিয়ম কিন্তু দূতকে দেখতে পান নি| সেইজন্য তিনি তাঁর গাধাটার ওপরেই রেগে গিয়ে তাকে আঘাত করলেন এবং রাস্তার ওপরে ফিরে যেতে তাকে বাধ্য করলেন| 24 পরে প্রভুর দূত এমন এক জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন যেখানে রাস্তাটি আরও সরু হয়ে এসেছে| জায়গাটি ছিল দুটি দ্রাক্ষা ক্ষেতের মাঝখানে| সেখানে রাস্তার দুই ধারেই দেওয়াল ছিল| 25 গাধাটি আবার প্রভুর দূতকে দেখতে পেয়ে দেওয়ালের গা ঘেঁষে হাঁটল| তাতে বিলিয়মের পা দেওয়ালে আঘাত লেগে ছড়ে গেল| সেই জন্যে বিলিয়ম আবার তাঁর গাধাটিকে আঘাত করলেন| 26 পরে প্রভুর দূত আরেকটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন| এই খানে রাস্তাটি সরু হয়ে এসেছিল, ফলে এমন কোনো জায়গা ছিল না যেখান দিয়ে গাধাটি তাঁকে পাশ কাটিযে চলে যেতে পারে| গাধাটি বাঁদিক অথবা ডানদিক, কোনো দিক দিয়েই পাশ কাটাতে পারল না| 27 গাধাটি প্রভুর দূতকে দেখে বিলিয়মকে তার পিঠের ওপরে নিয়েম্প শুয়ে পড়ল| তাতে বিলিয়ম গাধাটির ওপরে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে তার হাঁটার লাঠিটি দিয়ে গাধাটিকে আঘাত করলেন| 28 তখন প্রভু গাধাটিকে দিয়ে কথা বলালেন| গাধাটি বিলিয়মকে বলল, “আপনি আমার ওপরে রেগে গিয়েছেন কেন? আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি যে এই নিয়ে আপনি আমাকে তিনবার আঘাত করলেন?” 29 বিলিয়ম গাধাটিকে বলল, “তুমি আমাকে হাস্যস্পদ করে তুলেছ| যদি আমার হাতে একটি তরবারি থাকতো, তাহলে আমি এখনই তোমাকে হত্যা করতাম|” 30 কিন্তু গাধাটি বিলিয়মকে বলল, “আপনি সারা জীবন ধরে যার উপরে চড়ে ভ্রমণ করেছেন আমি কি আপনার সেই গাধা নই? আমি কি আপনার প্রতি এমন ব্যবহার করে থাকি?”বিলিয়ম বলল, “সেটা সত্য|” 31 তখন প্রভু বিলিয়মকে তার দূতকে দেখতে দিলেন| প্রভুর দূত হাতে একটি তরবারি নিয়ে রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়েছিলেন| বিলিয়ম মাটিতে নতজানু হয়ে অভিবাদন জানালেন| 32 তখন প্রভুর দূত বিলিয়মকে প্রশ্ন করল, “তুমি তোমার গাধাকে তিনবার আঘাত করেছো কেন? আমিই এসেছিলাম তোমাকে থামাতে| কিন্তু ঠিক সমযে 33 তোমার গাধা আমাকে দেখতে পেয়ে তিনবার আমার কাছ থেকে সরে গিয়েছিল| যদি গাধাটি সরে না যেতো, তাহলে আমি হয়তো এতক্ষণে তোমাকে হত্যা করতাম, কিন্তু তোমার গাধাকে বাঁচিয়ে রাখতাম|” 34 তখন বিলিয়ম প্রভুর দূতকে বললেন, “আমি পাপ করেছি| আমি জানতাম না যে আপনি আমার গতিরোধ করার জন্য রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়েছিলেন| আমার ওখানে যাওয়াতে আপনি যদি খুশী না হন, তাহলে আমি ঘরে ফিরে যাবো|” 35 তখন প্রভুর দূত বিলিয়মকে বললেন, “না! তুমি এই লোকদের সঙ্গে যেতে পারো| কিন্তু সাবধান, আমি তোমাকে যা বলতে বলবো তুমি কেবল তাই বলবে|” সুতরাং বালাকের প্রেরিত নেতাদের সঙ্গে বিলিয়ম চলে গেলেন| 36 বালাক শুনেছিলেন যে বিলিয়ম আসছেন| তাই অর্ণোন নদীর কাছে মোয়াবের শহরে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বালাক চলে গেলেন| জায়গাটি ছিল তাঁর দেশের উত্তর সীমানায| 37 বালাক বিলিয়মকে দেখতে পেয়ে বললেন, “আমি আগেই আপনাকে আসতে বলেছিলাম| বলেছিলাম, এটি খুবই জরুরী, কিন্তু আপনি আমার কাছে কেন আসেন নি? আপনাকে পারিশ্রমিক দিতে কি আমার সামর্য়্থ নেই?” 38 বিলিয়ম উত্তর দিলেন, “দেখুন আমি এখন এখানে| আমি এসেছি কিন্তু আপনি যা বলেছেন সেটা করতে আমি সক্ষম নাও হতে পারি| প্রভু ঈশ্বর আমাকে যা বলতে বলবেন, আমি কেবলমাত্র সে কথাই বলতে পারবো|” 39 তখন বিলিয়ম বালাকের সঙ্গে কিরিযত্-হুষোতে গেলেন| 40 বালাক কিছু গবাদি পশু এবং মেষ বলিদান করে সেই মাংসের কিছুটা বিলিয়মকে এবং তার সঙ্গী নেতাদের দিলেন| 41 পরদিন সকালে বালাক বিলিয়মকে নিয়ে ব্যামোথ বালে গেলে সেখান থেকে তাঁরা ইস্রায়েলীয়দের শিবিরের কিছুটা দেখতে পেলেন|
1 বিলিয়ম বালাককে বলল, “এখানে সাতটি বেদী তৈরী করো এবং আমার জন্য সাতটি ষাঁড় এবং সাতটি মেষ তৈরী রাখো|” 2 বিলিয়মের কথামতো বালাক কাজগুলো করলেন| এরপর বালাক এবং বিলিয়ম প্রত্যেকটি বেদীর ওপরে একটি করে মেষ এবং একটি করে ষাঁড় উত্সর্গ করলেন| 3 তখন বিলিয়ম বালাককে বললেন, “আপনি আপনার হোমবলির কাছে দাঁড়িয়ে থাকুন| আমি অন্য জায়গায় যাবো| হয়তো প্রভু আমার কাছে আসবেন এবং আমার যা বলা উচিত্ সেটা উনি আমায় বলে দেবেন|” এরপর বিলিয়ম একটি উঁচু জায়গায় চলে গেলেন| 4 ঈশ্বর সেই স্থানে বিলিয়মের কাছে এলে বিলিয়ম বললেন, “আমি সাতটি বেদী তৈরী করেছি এবং উত্সর্গ হিসেবে প্রত্যেকটি বেদীর ওপরে একটি ষাঁড় এবং একটি মেষ হত্যা করেছি|” 5 তখন প্রভু বিলিয়মকে তাঁর যা বলা উচিত্ তা বললেন| আর বললেন, “বালাকের কাছে ফিরে যাও, এবং আমি তোমাকে যা বলতে বলেছি সেই কথাগুলো বলো|” 6 তাম্প বিলিয়ম বালাকের কাছে ফিরে গেলেন| বালাক তখনও সেই হোমবলির কাছে দাঁড়িয়েছিলেন| মোয়াবের সমস্ত নেতারাও তাঁর সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন| 7 তখন বিলিয়ম এই কথাগুলো বললেন:মোয়াবের রাজা বালাক অরামের পূর্বদিকে পর্বত থেকে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন| বালাক আমাকে বললেন, “আসুন, আমার জন্য যাকোবের বিরুদ্ধে বলুন| আসুন, ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে বলুন|” 8 কিন্তু ঈশ্বর এইসব লোকদের বিরুদ্ধে নন, সুতরাং আমিও তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারবো না| ঈশ্বর তাদের খারাপ হোক এমন কিছু চান না| সুতরাং আমিও সেটা করতে পারবো না| 9 আমি পর্বতের ওপর থেকে ঐ লোকদের দেখছি| আমি উঁচু পর্বতশৃঙ্গ থেকে তাদের দেখছি| ঐ সমস্ত লোকরা একাই বাস করে| তারা অন্য কোনো জাতির অংশ নয়| 10 যাকোবের লোকদের কে গণনা করতে পারবে? তারা ধূলোর কণার মতোই সংখ্যায় প্রচুর| ইস্রায়েলের এক চতুর্থাংশ লোককেও কেউ গণনা করতে পারবে না| একজন ভালো লোকর মতো আমাকে মরতে দাও| তাদের মতো সুখে আমার জীবন শেষ হতে দাও| 11 বালাক বিলিয়মকে বললেন, “আপনি আমার জন্য কি করলেন? আমার শত্রুদের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য আমি আপনাকে এখানে এনেছিলাম| কিন্তু আপনি তাদের কেবলমাত্র আশীর্বাদ করলেন!” 12 কিন্তু বিলিয়ম উত্তর দিলেন, “প্রভু আমাকে যে কথা বলেছেন, আমি অবশ্যই সেই কথা বলবো|” 13 তখন বালাক তাকে বললেন, “তাহলে আমার সঙ্গে আরেকটি জায়গায় আসুন| সেই জায়গা থেকে আপনি তাদের দেখতে পাবেন| আপনি তাদের সকলকে দেখতে পাবেন না, কেবল প্রান্তভাগ দেখতে পাবেন| সেই জায়গা থেকে আমার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আপনার পক্ষে কথা বলা সম্ভব হতে পারে|” 14 সুতরাং বালাক বিলিয়মকে সোফীম ক্ষেত্রের ওপরে নিয়ে গেলেন| এই জায়গাটি ছিল পিস্গা পর্বতের ওপরে| সেই জায়গায় বালাক সাতটি বেদী তৈরী করে প্রত্যেকটি বেদীর ওপরে উত্সর্গস্বরূপ একটি করে ষাঁড় এবং একটি করে মেষ উত্সর্গ করলেন| 15 বিলিয়ম বালাককে বললেন, “এই স্থানে আপনার হোমবলির পাশে থাকুন| আমি ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা করতে যাবো|” 16 সুতরাং ঈশ্বর বিলিয়মের কাছে এলেন এবং কি বলতে হবে তা বিলিয়মকে বলে দিলেন| এরপর প্রভু বিলিয়মকে বালাকের কাছে ফিরে গিয়ে সেই কথাগুলো বলতে বললেন| 17 সুতরাং বিলিয়ম বালাকের কাছে ফিরে গেলেন| বালাক তখনও পর্য়ন্ত হোমবলির কাছে দাঁড়িয়েছিলেন| মোয়াবের নেতারা তার সঙ্গে সেখানেই ছিলেন| বালাক বিলিয়মকে আসতে দেখে বললেন, “প্রভু কি বলেছেন?” 18 বিলিয়ম তখন এই ভাববাণী বললেন:“দাঁড়াও বালাক এবং আমার কথা শোন| আমার কথা শোন, সিপ্পোরের পুত্র বালাক| 19 ঈশ্বর মানুষ নন; তিনি মিথ্য়ে বলবেন না| ঈশ্বর মানুষ নন; তাঁর সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হবে না| যদি প্রভু বলেন যে তিনি কোনো কাজ করবেন, তখন তিনি অবশ্যই সে কাজ করবেন| যদি প্রভু যদি কোনো প্রতিজ্ঞা করেন তাহলে তিনি প্রতিজ্ঞা মতো কাজটি করবেন| 20 প্রভু আমাকে ঐ সমস্ত লোকদের আশীর্বাদ করতে বলেছেন| প্রভু তাদের আশীর্বাদ করেছেন, সুতরাং আমি সেটা পরিবর্তন করতে পারব না| 21 ঈশ্বর যাকোবের লোকদের মধ্যে কোনো অন্যায দেখেন নি| ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যেও তিনি কোনো পাপ দেখেন নি| প্রভু তাদের ঈশ্বর এবং তিনি তাদের সঙ্গে আছেন| মহান রাজা তাদের সঙ্গে আছেন| 22 ঈশ্বর ঐসব লোকদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছেন| তিনি তাদের পক্ষে বুনো ষাঁড়ের মতোই শক্তিশালী| 23 যাকোবের লোকদের পরাজিত করতে পারে এমন কোনো ক্ষমতা নেই| ইস্রায়েলের লোকদের থামাতে পারে এমন কোনো মন্ত্রও নেই| যাকোব সম্পর্কে এবং ইস্রায়েলের লোকদের সম্পর্কে লোক এই কথা বলবে: ‘ঈশ্বর যে সব মহত্ কাজ করেছেন, তা দেখো!’ 24 এইসব লোকরা সিংহের মতোই উঠে দাঁড়ায এবং যে পর্য়ন্ত না তার শিকার খায় ও তার রক্ত পান করে সে পর্য়ন্ত বিশ্রাম করে না|” 25 তখন বালাক বিলিয়মকে বললেন, “আপনি ওদের শাপও দেবেন না, আশীর্বাদও করবেন না|” 26 বিলিয়ম উত্তর দিলেন, “আমি আপনাকে আগেই বলেছিলাম যে প্রভু আমাকে যা বলতে বলবেন, আমি কেবল সেই কথাই বলতে পারবো|” 27 তখন বালাক বিলিয়মকে বললেন, “তাহলে আমার সঙ্গে আপনি আরেকটি জায়গায় আসুন| এমন হতে পারে যে, ঈশ্বর খুশী হবেন এবং সেই স্থান থেকে অভিশাপ দেওয়ার জন্য আপনাকে অনুমতি দেবেন|” 28 সুতরাং বালাক বিলিয়মকে নিয়ে পিযোর পর্বতের ওপরে গেলেন| সেই পর্বতের ওপর থেকে মরুভূমি দেখা যায়| 29 বিলিয়ম বললেন, “এখানে সাতটি বেদী তৈরী করুন| তারপর সেই বেদীর জন্য সাতটি ষাঁড় এবং সাতটি মেষকে তৈরী রাখুন|” 30 বিলিয়ম যা করতে বলেছিলেন বালাক ঠিক তাই করলেন| বালাক বেদীগুলোর ওপরে ষাঁড় ও মেষগুলোকে উত্সর্গ করলেন|
1 বিলিয়ম দেখলেন যে প্রভু ইস্রাযেলকে আশীর্বাদ করতে পেরে সন্তুষ্ট| সেই কারণে বিলিয়ম আগের মত মন্ত্র পাবার জন্য চেষ্টা করলেন না| কিন্তু তিনি মরুভূমির দিকে ফিরে তাকালেন| 2 বিলিয়ম চোখ তুলে মরুভূমির একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তের দিকে তাকিযে ইস্রায়েলের সমস্ত লোককে দেখলেন| তারা পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে শিবির স্থাপন করেছিল| তখন বিলিয়মের কাছে ঈশ্বরের আত্মা এলেন এবং তাকে নিয়ন্ত্রণ করলেন| 3 তখন বিলিয়ম এই ভাববানী বললেন:“বিযোরের পুত্র বিলিয়মের কাছ থেকে এই বার্তা| আমি যা কিছু স্পষ্ট দেখলাম সে সম্পর্কে বলছি| 4 আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বার্তা শুনেছি| সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাকে যা দেখিয়েছেন তা আমি দেখেছি| আমি যা দেখেছি সেটা বিনযের সঙ্গে বলছি| 5 “হে যাকোবের লোকরা, তোমাদের তাঁবুগুলো কি সুন্দর! ইস্রায়েলের লোকরা, তোমাদের ঘরগুলো কতো সুন্দর! 6 তোমাদের তাঁবুগুলো তালগাছের সারির মতো, নদীর ধারের কনানের মতো| তোমরা প্রভুর দ্বারা রোপিত হওয়া সুমিষ্ট গন্ধগুল্মের মতো, জলের পাশে বেড়ে ওঠা এরস বৃক্ষের মতো| 7 তোমাদের জলের অভাব হবে না, এই জল তোমাদের বীজের বেডে ওঠার কাজে ব্যবহার করা যাবে| রাজা অগাগের থেকে তোমাদের রাজা অনেক মহত্ হবেন| তোমাদের রাজ্য অনেক শ্রেষ্ঠতর হবে| 8 “ঈশ্বর ঐ সমস্ত লোকদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছেন| তারা বুনো ষাঁড়ের মতো শক্তিশালী| তারা তাদের সমস্ত শত্রুদের পরাজিত করবে| তারা তাদের হাড় ভেঙ্গে দেবে এবং তীর বিদ্ধ করবে| 9 “ইস্রাযেল একটি সিংহের মতো, গুঁড়ি মেরে শুয়ে আছে| হ্যাঁ, তারা তেজী সিংহের মতো, এবং কেউই তাকে জাগাতে চায না| যদি কোনো ব্যক্তি তোমাকে আশীর্বাদ করে তবে সে নিজের আশীর্বাদ পাবে এবং যদি কোনোও ব্যক্তি তোমার বিরুদ্ধে কথা বলে তাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে|” 10 বালাক বিলিয়মের ওপরে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে নিজের হাত ঠুকলেন| বালাক বিলিয়মকে বললেন, “আমি আপনাকে এসে আমার শত্রুদের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলেছিলাম| কিন্তু আপনি তাদের এই নিয়ে তিনবার আশীর্বাদ করেছেন| 11 এখন অবিলম্বে আপনি এই স্থান ত্যাগ করে ঘরে পালান! আমি বলেছিলাম যে আমি আপনাকে খুব ভালো পারিশ্রমিক দেব| কিন্তু দেখুন, প্রভু আপনাকে আপনার পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করলেন|” 12 বিলিয়ম বালাককে বললেন, “স্মরণ করে দেখুন আপনি আমার কাছে লোক পাঠিয়ে যখন আমাকে আসার জন্য বলেছিলেন, তখনই আমি তাদের বলেছিলাম, 13 বালাক তার রূপো এবং সোনায ভরা সবথেকে সুন্দর বাড়ীটি আমায় দিতে পারেন, কিন্তু তবুও আমি কেবল সেই কথাই বলবো যা প্রভু আমাকে বলার জন্য আদেশ করবেন| আমি ভালো কিংবা খারাপ কোনো কিছুই নিজে করতে পারবো না| প্রভু যা আদেশ করবেন, আমি অবশ্যই সেই কথা বলবো|’ 14 এখন আমি আমার নিজের লোকদের কাছে ফিরে যাচ্ছি, কিন্তু আমি আপনাকে সতর্কবার্তা দেবো| ইস্রায়েলের এই সমস্ত লোকরা ভবিষ্যতে আপনার এবং আপনার লোকদের সঙ্গে কি করবে সেটা আমি বলে দেবো|” 15 তখন বিলিয়ম এই ভাববাণী করে বললেন:“বিযোরের পুত্র বিলিয়মের কাছ থেকে এই বার্তা, আমি যা স্পষ্ট দেখেছি সে সম্পর্কেই বলছি| 16 আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বার্তা শুনেছি| পরাত্পর আমাকে যা শিখিযেছেন তা আমি শিখেছি| সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাকে যা দেখিয়েছেন তা আমি দেখেছি| আমি যা স্পষ্ট দেখেছি সে সম্পর্কে বিনযের সঙ্গে বলছি| 17 “আমি দেখলাম প্রভু আসছেন, কিন্তু এখন নয়| আমি দেখলাম তিনি আসছেন, কিন্তু তাড়াতাড়ি নয়| যাকোবের পরিবার থেকে একজন নক্ষত্র আসবে| ইস্রায়েলের লোকদের মধ্য থেকে একজন নতুন শাসনকর্তা আসবেন| সেই শাসনকর্তা মোয়াবের লোকদের মাথা চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবেন| সেই শাসনকর্তা কলহের সকল পুত্রদের মাথা চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবেন| 18 ইস্রাযেল ইদোম দেশ অধিকার করবে এবং সে তার শত্রুর, সেয়ীর দেশটিও অধিকার করবে| 19 “যাকোবের পরিবার থেকে একজন নতুন শাসনকর্তা আসবেন| সেই শাসনকর্তা সেই শহরের অবশিষ্ট লোকদের ধ্বংস করবেন|” 20 এরপর বিলিয়ম অমালেকীয়দের দেখতে পেয়ে এই ভাববাণী বললেন:“সকল জাতির মধ্যে অমালেক হচ্ছে সবথেকে শক্তিশালী| কিন্তু শেষে তারাও ধ্বংস হয়ে যাবে!” 21 এরপর বিলিয়ম কেনীয় লোকদের দেখে এই কথাগুলো বললেন:“তোমরা বিশ্বাস করো যে পর্বতের ওপরের পাখীর বাসার মতোই তোমাদের দেশটিও নিরাপদ| 22 কিন্তু প্রভু যেভাবে কেনীয়কে ধ্বংস করেছিলেন, কেনীয় লোকরাও ধ্বংস হয়ে যাবে| অশূর তোমাদের বন্দী করবেন|” 23 এরপর বিলিয়ম এই ভাববাণী বললেন:“ঈশ্বর যখন এটি করবেন তখন কে বাঁচবে? 24 কিত্তীমের থেকে অনেক জাহাজ আসবে| তারা অশূরকে এবং এবরকে পরাজিত করবে| কিন্তু সেই জাহাজগুলোও ধ্বংস হয়ে যাবে|” 25 এরপর বিলিয়ম উঠে বাড়ীতে ফিরে গেলেন| এবং বালাক তার নিজের পথে ফিরে গেলেন|
1 শিটীমের কাছে ইস্রায়েলের লোকরা শিবির স্থাপন করেছিল| সেই সময় ইস্রায়েলের লোকরা মোয়াবের স্ত্রীলোকের সঙ্গে য়ৌন পাপে লিপ্ত হয়েছিল| 2 মোয়াবের স্ত্রীলোকরা লোকদের সেখানে আসার জন্য এবং তাদের মূর্ত্তিদের কাছে উত্সর্গে য়োগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানালো| সেই কারণে ইস্রায়েলীয়রা মূর্ত্তিদের পূজায য়োগদান করল| তারা উত্সর্গীকৃত দ্রব্যসামগ্রী খেযে সেই মূর্ত্তিদের পূজাও করল| এইভাবে ইস্রায়েলের লোকরা বাল্-পিযোরের মূর্ত্তির পূজা শুরু করল| তাই প্রভু তাদের ওপর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন| 3 4 প্রভু মোশিকে বললেন, “এইসব লোকদের সমস্ত নেতাদের নিয়ে এসো এবং তাদের প্রভুর সামনে হত্যা কর যাতে সমস্ত লোকরা দেখতে পায়| তাহলে প্রভু ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের বিরুদ্ধে তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন না|” 5 সেই কারণে মোশি ইস্রায়েলের বিচারকদের বললেন, “তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের পরিবারগোষ্ঠী থেকে সেই লোকগুলিকে খুঁজে হত্যা করো যারা পিযোরের বালের মূর্ত্তি পূজা করেছে|” 6 আর দেখ ঠিক সেই সময় একজন ইস্রায়েলীয় এক মিদিয়নীয়া স্ত্রীলোককে বাড়ীতে তার পরিবারের কাছে নিয়ে এল| সেখানে মোশি এবং অন্যান্য নেতারা যাতে এ সব দেখতে পান সেই জন্যই সে এটি করল| সেই সময় মোশি এবং অন্যান্য ইস্রায়েলীয় সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে কাঁদছিলেন| 7 ইলিয়াসরের পুত্র এবং যাজক হারোণের পৌত্র ছিলেন পীনহস| পীনহস ইস্রায়েলীয় লোকটিকে স্ত্রীলোকটিকে সঙ্গে নিয়ে শিবিরে আসতে দেখেছিলেন, সেজন্যে তিনি সমাবেশ ত্যাগ করে তার বর্শা নিলেন| 8 তারপর ইস্রায়েলীয় লোকটিকে অনুসরণ করে তাঁবুতে গিয়ে তাঁর বর্শার সাহায্যে সেই ইস্রায়েলীয় লোকটিকে এবং সেই মিদিয়নীয়া স্ত্রীলোকটিকে হত্যা করলেন| তিনি তাদের দুজনের পেটের ভিতরে বর্শাটিকে ঢুকিয়ে দিলেন| তাতে ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে যে সাংঘাতিক মহামারী শুরু হয়েছিল তা থেমে গেল| 9 মোট 24,000 লোক এই মহামারীতে মারা গিয়েছিল| 10 প্রভু মোশিকে বললেন, 11 “আমি আমার লোকদের অন্তর্জ্বালায জ্বলছি; আমি চাই তারা কেবলমাত্র আমার থাকবে| যাজক হারোণের পৌত্র ইলিয়াসরের পুত্র পীনহস ইস্রায়েলের লোকদের আমার আক্রোশ থেকে বাঁচিয়েছে| সুতরাং আমি যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে তাদের হত্যা করব না| 12 পীনহসকে বলো যে, আমি তার সঙ্গে শান্তির চুক্তি করবো| 13 এটি হলো চুক্তি; সে এবং তারপরে তার পরিবারের সদস্যরা সকল সময়ই যাজক হবে, কারণ ঈশ্বর সম্পর্কে তার এক তীব্র টান আছে এবং সে এমন কাজ করেছে যাতে ইস্রায়েলের লোকরা পবিত্র হয়!” 14 মিদিয়নীয়া স্ত্রীলোকটির সঙ্গে যে ইস্রায়েলীয় লোকটি হত হয়েছিল সে ছিল সালুর পুত্র সিম্রি| সে শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠীর একটি পরিবারের নেতা ছিল| 15 যে মিদিয়নীয়া স্ত্রীলোকটি হত হয়েছিল তার নাম ছিল কস্বী| সে ছিল সূরের কন্যা| সূর একটি পরিবারের কর্তা ছিলেন এবং একটি মিদিয়নীয় পরিবারগোষ্ঠীর নেতা ছিলেন| 16 প্রভু মোশিকে বললেন, 17 “মিদিয়নীয় লোকদের প্রতি শত্রু মনোভাব পোষণ কর এবং তাদের হত্যা করো| 18 কারণ তারা তোমার সাথে শত্রুতা করেছে| তারা তোমাকে পিযোরে প্রতারিত করেছিল| এবং তারা কস্বী নামক একজন স্ত্রীলোকের দ্বারা তোমাকে প্রতারিত করেছিল| সে ছিল এক মিদিয়নীয়া নেতার কন্যা| কিন্তু যখন ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে অসুস্থতা দেখা দেয সেই সময় তাকে হত্যা করা হয়েছিল| যখন লোকরা প্রতারিত হয়ে পিযোরের বালের মূর্ত্তি পূজা করেছিল সেই সময় তাদের মধ্যে অসুস্থতা দেখা দিয়েছিল|”
1 সেই সাংঘাতিক অসুস্থতার পরে, প্রভু মোশি এবং যাজক হারোণের পুত্র ইলিয়াসরের সঙ্গে কথা বললেন| 2 তিনি বললেন, “ইস্রায়েলের লোকদের গণনা কর| 20 বছর অথবা তার বেশী বয়স্ক সকল পুরুষের সংখ্যা গণনা করো এবং তাদের পরিবার অনুযায়ীতালিকাভুক্ত করো| এই পুরুষরা ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীতে সেবা করার য়োগ্যতাসম্পন্ন|” 3 এই সময় লোকরা মোয়াবের যর্দন উপত্যকায শিবির স্থাপন করেছিল| এই স্থানটি ছিল যিরীহোর অপর পারে যর্দন নদীর কাছে| সুতরাং মোশি এবং যাজক ইলিয়াসর লোকদের বললেন, 4 “তোমরা অবশ্যই 20 বছর অথবা তার বেশী বয়স্ক পুরুষদের সংখ্যা গণনা করবে| মিশর দেশ থেকে বেরিয়ে আসার সময় প্রভু মোশিকে এবং ইস্রায়েলের লোকদের যেভাবে আজ্ঞা করেছিলেন, সেভাবেই করো| 5 এই সব লোকরা ছিল রূবেণের পরিবারের অন্তর্ভূক্ত| (রূবেণ ছিলেন ইস্রায়েলের প্রথমজাত পুত্র|) পরিবারগুলো ছিল:হনোক হতে হনোকীয পরিবার| পল্লু হতে পল্লুযীয পরিবার| 6 হিষ্রোণ হতে হিষ্রোণীয পরিবার| কর্ম্মি হতে র্কম্মীয পরিবার| 7 ঐ পরিবারগুলো ছিল রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে মোট 43,730 জন পুরুষ ছিল| 8 পল্লুর পুত্র ছিলেন ইলীয়াব| 9 ইলীয়াবের তিন পুত্র নমূযেল, দাথন এবং অবীরাম| দাথন এবং অবীরাম ছিলেন সেই দুজন নেতা, যারা মোশি এবং হারোণের বিরোধিতা করেছিলেন| কোরহ যখন প্রভুর বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন সে সময় তারা কোরহকে অনুসরণ করেছিলেন| 10 সেই সময় পৃথিবীর মাটি বিদীর্ণ হয়ে কোরহ ও তার অনুসরণকারীদের গ্রাস করেছিল| এবং 250 জন পুরুষ মারা গিয়েছিল| সেটি ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি একটি সতর্কবাণী ছিল| 11 কিন্তু কোরহের সন্তানরা মারা যান নি| 12 এই পরিবারগুলি হল শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত:নমূযেল হতে নমূযেলীয পরিবার|যামীন হতে যামীনীয পরিবার| যাখীন হতে যাখীনীয পরিবার| 13 সেরহ হতে সেরহীয পরিবার| শৌল হতে শৌলীয পরিবার| 14 ঐ পরিবারগুলি ছিল শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে মোট 22,200 জন পুরুষ ছিলেন| 15 এই পরিবারগুলো হল গাদের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত:সিফোন হতে সিফোনীয পরিবার| হগি হতে হগীয পরিবার| শূনি হতে শূনীয পরিবার| 16 ওষ্ণি হতে ওষ্ণীয পরিবার| এরি হতে এরীয পরিবার| 17 আরোদ হতে আরোদীয পরিবার| অরোলি হতে অরেলীয পরিবার| 18 ঐ পরিবারগুলি ছিল গাদের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে মোট 40,500 জন পুরুষ ছিলেন| 19 এই পরিবারগুলি ছিল যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত:শেলা হতে শেলাযীয পরিবার| পেরস হতে পেরসীয পরিবার|সেরহ হতে সেরহীয পরিবার| যিহূদার পুত্রদের মধ্যে দুজন, এর এবং ওনন কনান দেশে মারা গিয়েছিলেন| 20 21 এই পরিবারগুলো হল পেরসের বংশধর:হিষ্রোণ হতে হিষ্রোণীয পরিবার| হামুল হতে হামুলীয পরিবার| 22 ঐ পরিবারগুলি ছিল যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 76,500 জন| 23 ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পরিবারগুলো ছিল:তোলয হতে তোলযীয পরিবার| পূয হতে পূনীয পরিবার| 24 যাশূর হতে যাশূরীয পরিবার| শিম্রোণ হতে শিম্রোনীয পরিবার| 25 ঐ পরিবারগুলি ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ছিল| সেখানে পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 64,300 জন| 26 সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পরিবারগুলি ছিল:সেরদ হতে সেরদীয পরিবার|এলোন হতে এলোনীয পরিবার|য়হলেল হতে য়হলেলীয পরিবার| 27 ঐ পরিবারগুলি ছিল সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 60,500 জন| 28 য়োষেফের দুই পুত্রছিল মনঃশি এবং ইফ্রয়িম| প্রত্যেক পুত্রই তাদের নিজেদের পরিবারদের নিয়ে একটি গোষ্ঠী হয়ে উঠেছিলেন| 29 মনঃশি পরিবারগুলি ছিল:মাখীর হতে মাখীরীয পরিবার| (মাখীর ছিলেন গিলিয়দের পিতা|)গিলিয়দ হতে গিলিয়দীয পরিবার| 30 গিলিয়দের পরিবারগুলো ছিল: ঈযেষর হতে ঈযেষরীয পরিবার| হেলক হতে হেলকীয পরিবার| 31 অস্রীযেল হতে অস্রীযেলীয পরিবার| শেখম হতে শেখমীয পরিবার| 32 শিমীদা হতে শিমীদায়ীয পরিবার| হেফর হতে হেফরীয পরিবার| 33 সলফাদ ছিলেন হেফরের পুত্র| কিন্তু তার কোনো পুত্র ছিল না| কেবল কন্যারা ছিল| তার কন্যাদের নাম ছিল মহলা, নোয়া, হগ্লা, মিল্কা এবং তির্সা| 34 ঐ পরিবারগুলোর সবগুলোই ছিল মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 52,700 জন| 35 ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পরিবারগুলো ছিল:শূথলহ হতে শূথলহীয় পরিবার| বেখর হতে বেখরীয় পরিবার| তহন হতে তহনীয় পরিবার| 36 শূথলহের পরিবার থেকে এরণ এসেছিল আর এরণ থেকে এসেছিল এরণীয পরিবার| 37 ঐ পরিবারগুলো ছিল ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে মোট 32,500 জন পুরুষ ছিলেন| ঐসব লোকদের সকলেই ছিলেন ষোষেফের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| 38 বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পরিবারগুলি ছিল:বেলা হতে বেলাযীয় পরিবার|অস্বেল হতে অস্বেলীয় পরিবার|অহীরাম হতে অহীরামীয় পরিবার| 39 শূফম থেকে শূফমীয পরিবার| হূফম থেকে হূফমীয পরিবার| 40 বেলার পরিবারগুলি ছিল: অর্দ হতে অর্দীয় পরিবার| নামান থেকে নামানীয় পরিবার| 41 ঐ পরিবারগুলি সবাই ছিল বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 45,600 জন| 42 দানের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পরিবারগুলো ছিল:শূহম হতে শূহমীয গোষ্ঠী|ঐ পরিবারগোষ্ঠীটি ছিল দানের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| 43 শূহনীয পরিবারগোষ্ঠীতে অনেক পরিবার ছিল| সেখানে পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 64,400 জন| 44 আশেরের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পরিবারগুলি ছিল: য়িম্ন হতে য়িম্নীয পরিবার| য়িস্বি হতে য়িস্বীয পরিবার| বরিয হতে বরিযীয পরিবার| 45 বরিয়র পরিবারগুলি ছিল:হেবর হতে হেবরীয় পরিবার| মল্কীয়েল হতে মল্কীয়েলীয় পরিবার| 46 (আশেরের সারহ নামের এক কন্যাও ছিল|) 47 ঐ পরিবারগুলি ছিল আশেরের পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| সেখানে পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 53,400 জন| 48 নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পরিবারগুলি ছিল: যহসীয়েল হতে যহসীয়েলীয় পরিবার| গুনি হতে গুনীয পরিবার| 49 যেত্সর হতে যেত্সরীয় পরিবার| শিল্লেম হতে শিল্লেমীয় পরিবার| 50 ঐ পরিবারগুলো নপ্তালির পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ছিল| সেখানে পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 45,500 জন| 51 সুতরাং ইস্রায়েলীয় পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 6,01,730 জন| 52 প্রভু মোশিকে বললেন, 53 “দেশ ভাগ করা হবে এবং এই লোকদের সেগুলো দেওয়া হবে| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী তাদের সংখ্যা অনুসারে জমি পাবে| 54 বড় পরিবার বেশী জমি পাবে এবং ছোট পরিবার কম জমি পাবে| যার যত লোক তাকে ততটা অধিকার দাও| 55 কিন্তু কোন পরিবার জমির কোন অংশ পাবে সেটি ঠিক করার জন্যে তুমি অবশ্যই ঘুঁটি চালবে| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী তার অংশের যে জমি পাবে, সেই জমিকে সেই পরিবারগোষ্ঠীর নাম দেওয়া হবে| 56 জমি বড় বা ছোট যাম্প হোক না কেন তুমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ঘুঁটি চালবে|” 57 তারা লেবীয় গোষ্ঠীকেও গণনা করেছিল| লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত পরিবারগুলি হল:গের্শোন হতে গের্শোনীয় পরিবার| কহাত্ হতে কহাতীয় পরিবার| মরারি হতে মরারীয় পরিবার| 58 এই পরিবারগুলোও লেবীয় পরিবারের অন্তর্ভুক্ত:লিব্নীয় পরিবার|হিব্রোনীয় পরিবার|মহলীয় পরিবার|মূশীয় পরিবার|কোরহীয় পরিবার|অম্রাম ছিলেন কহাত্ পরিবারের অন্তর্ভক্ত| 59 অম্রামের স্ত্রীর নাম ছিল য়োকেবদ| তিনি নিজেও ছিলেন লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত| তার জন্ম হয়েছিল মিশরে| অম্রাম এবং য়োকেবদের দুই পুত্র ছিল হারোণ এবং মোশি| তাদের মরিয়ম নামে একটি কন্যাও ছিল| 60 হারোণ ছিলেন নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর এবং ঈথামরের পিতা| 61 কিন্তু নাদব এবং অবীহূ মারা গিয়েছিলেন কারণ তারা প্রভুকে যে ধরণের আগুন দিয়ে নৈবেদ্য প্রদান করেছিলেন তা করা বারণ ছিল| 62 লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর পুরুষদের মোট সংখ্যা ছিল 23,000 জন| কিন্তু ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের সঙ্গে এদের গণনা করা হয় নি| প্রভু অন্যান্য লোকদের যে জমি দিয়েছিলেন তার কোনো অংশ তাঁরা পান নি| 63 মোয়াবের যর্দন উপত্যকায থাকাকালীন মোশি এবং যাজক ইলিয়াসর ইস্রায়েলের লোকদের গণনা করেছিলেন| এই জায়গাটি ছিল যিরীহোর অপর পারে যর্দন নদীর কাছে| 64 কিন্তু বহুবছর আগে সীনয় মরুভূমিতে মোশি এবং যাজক হারোণ যখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের গণনা করেছিলেন তখন যারা গণিত হয়েছিল তাদের একজনও এর মধ্যে ছিল না| ঐ সব লোকদের আর কেউই জীবিত ছিলেন না| 65 কেন? কারণ প্রভু ইস্রায়েলের ঐ সমস্ত লোকদের বিষয়ে বলেছিলেন যে, তারা সকলেই মরুভূমিতে মারা যাবে| কেবল দুজন ব্যক্তি বেঁচে ছিলেন| তারা হলেন যিফুন্নির পুত্র কালেব এবং নূনের পুত্র যিহোশূয়|
1 সলফাদ ছিলেন হেফরের পুত্র| হেফর ছিলেন গিলিয়দের পুত্র| গিলিয়দ ছিলেন মাখীরের পুত্র| মাখীর মনঃশির পুত্র| মনঃশি য়োষেফের পুত্র ছিলেন| সলফাদের পাঁচ কন্যা ছিল| তাদের নাম ছিল মহলা, নোয়া, হগ্লা, মিল্কা এবং তির্সা| 2 এরা সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে মোশি, যাজক ইলিয়াসর, অন্যান্য নেতা এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বলল, 3 “আমরা যখন মরুভুমির মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করছিলাম সে সময় আমাদের পিতা মারা গিয়েছিলেন| তিনি কোরহ দলে য়োগদানকারী লোকদের মধ্যে ছিলেন না| (যে কোরহ প্রভুর বিরোধিতা করেছিলেন|) কিন্তু আমাদের পিতা নিজ পাপে মারা গিয়েছিলেন| আমাদের পিতার কোনো পুত্র নেই| 4 এর অর্থ হল এই যে, আমাদের পিতার নাম লোপ পাবে| এটা ঠিক নয় যে আমাদের পিতার কোনো পুত্র নেই বলে তার নাম শেষ হয়ে যাবে| সুতরাং আমাদের পিতার ভাইরা যে জমি পাবে তার কিছুটা অন্ততঃ যাতে আমরা পাই তার জন্য আমরা আপনাদের কাছে প্রার্থনা করছি|” 5 সেই কারণে মোশি প্রভুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে তার কি করা উচিত্ হবে| 6 প্রভু তাকে বললেন, 7 “সলফাদ এর মেয়েরা ঠিক বলেছে| তাদের পিতার ভাইদের জমির অংশ ভাগ করে নেওয়াই তাদের উচিত্ হবে| সুতরাং যে জমিটা তুমি তাদের পিতাকে দিতে, সেই জমিটা তুমি ওদের দিয়ে দাও| 8 “সুতরাং ইস্রায়েলের লোকদের জন্য এটিকে বিধি করে নাও| ‘যদি কোন ব্যক্তির কোনো পুত্র সন্তান না থাকে এবং সে মারা যায়, তাহলে তার যা কিছু আছে সে সব কিছুই তার মেয়েকে দেওয়া হবে| 9 যদি তার কোনো মেয়ে না থাকে, তাহলে তার সমস্ত কিছুই তার ভাইদের দেওয়া হবে| 10 11 যদি তার পিতার কোনো ভাই না থাকে তাহলে তার যা কিছু আছে সে সমস্তই তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীযকে দেওয়া হবে| ইস্রায়েলের লোকদের জন্য এটিই আইন| প্রভু মোশিকে এই আদেশ দিলেন|”‘ 12 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “যর্দন নদীর পূর্বদিকের মরুভূমিতে যে কোনো একটি পর্বতের ওপরে যাও| ইস্রায়েলের লোকদের আমি যে দেশ দিচ্ছি সেটা তুমি দেখতে পাবে| 13 সেই দেশ দেখার পরে তুমি তোমার ভাই হারোণের মতো মারা যাবে| 14 মনে করে দেখো যখন লোকরা সীন মরুভূমিতে তৃষ্ণায বিচলিত হয়েছিল তখন তুমি এবং হারোণ দুজনেই আমার আজ্ঞা পালন করতে অস্বীকার করেছিলে| তুমি আমাকে সম্মান দাও নি এবং লোকদের দেখাও নি যে আমি পবিত্র|” (সীন মরুভূমির কাদেশের কাছে মরীবার জলের কাছে এই ঘটনা ঘটে|) 15 মোশি প্রভুকে বললেন, 16 “প্রভু ঈশ্বর আপনি সকল মানুষের চিন্তা জানেন| আমি প্রার্থনা করি যেন আপনি এই সমস্ত লোকদের জন্য একজন নেতা মনোনীত করবেন| 17 যিনি তাদের এই দেশ থেকে বের করে নতুন দেশে নিয়ে যাবেন| তাহলে প্রভুর লোকরা মেষপালকহীন মেষের মতো হবে না|” 18 সুতরাং প্রভু মোশিকে বললেন, “নূনের পুত্র যিহোশূয় নতুন নেতা হবে| সে খুবই জ্ঞানী|তাকে নতুন নেতা করো| 19 তাকে যাজক ইলিয়াসর এবং সকল লোকের সামনে দাঁড়াতে বলো| এরপর তাকে নতুন নেতা করো| 20 “লোকদের দেখিয়ে দাও যে তুমি তাকে নেতা করছ| তাহলে সমস্ত লোক তাকে মান্য করবে| 21 যিহোশূয় যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করে তবে সে যাজক ইলিয়াসরের কাছে যাবে| ইলিয়াসর প্রভুর উত্তর জানার জন্য উরীমের সাহায্য নেবে| তখন ঈশ্বরের কথামতো যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা কাজ করবে| যদি তিনি বলেন, ‘যুদ্ধে যাও’ তাহলে তারা যুদ্ধে যাবে| এবং যদি তিনি বলেন, ‘ঘরে যাও’ তাহলে তারা ঘরে যাবে|” 22 মোশি প্রভুর আজ্ঞা পালন করলেন| মোশি যিহোশূয়কে যাজক ইলিয়াসর এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের সামনে দাঁড়াতে বললেন| 23 এরপর যিহোশূয় যে নতুন নেতা সেটি দেখানোর জন্য মোশি তার ওপরে দু’হাত রাখলেন| প্রভু তাকে যে ভাবে বলেছিলেন সেভাবেই তিনি এই কাজটি করলেন|
1 এরপর প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের এই আজ্ঞা কর| তাদের বলো যে ঠিক সমযে শস্যের নৈবেদ্য এবং উত্সর্গ দেওয়ার ব্যাপারে তারা যেন নিশ্চিত হয়| ঐ নৈবেদ্যগুলি আগুনের সাহায্যে তৈরী করতে হবে| তাদের সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 3 তারা অবশ্যই আগুনের সাহায্যে তৈরী করে এই নৈবেদ্যগুলি প্রভুকে দেবে| প্রত্যেকদিন এক বছর বয়স্ক 2 মেষশাবক দেবে| সেই মেষশাবক 2 টির যেন কোনো খুঁত না থাকে| 4 ঐ মেষশাবক দুটির মধ্যে একটিকে সকালে এবং অপরটিকে গোধুলি বেলায উত্সর্গ করো| 5 এছাড়াও 1 কোযার্ট অলিভ তেলের সঙ্গে 8 কাপ খুব মিহি মযদা মিশ্রিত করে দানাশস্যের নৈবেদ্যও দাও|” 6 (সীনয় পর্বতের ওপরে তারা তাদের দৈনিক নৈবেদ্য দেওয়া শুরু করল| সেই নৈবেদ্যগুলি আগুনের সাহায্যে তৈরী হল এবং তাদের সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করল|) 7 লোকরা এছাড়াও অবশ্যই পেয় নৈবেদ্য প্রদান করবে যেটা আগুনের সাহায্যে তৈরী নৈবেদ্যর সঙ্গেই খাবে| তারা অবশ্যই প্রত্যেকটি মেষশাবকের সঙ্গে 1 কোযার্ট করে দ্রাক্ষারস দেবে| পবিত্র স্থানে বেদীর ওপরে সেই পেয় নৈবেদ্য ঢেলে দেবে| এটি প্রভুর কাছে একটি উপহার| 8 দ্বিতীয় মেষশাবকটিকে গোধুলি বেলায উত্সর্গ করো| এটিকে শস্য নৈবেদ্য ও পেয় নৈবেদ্যর সাথে সকালের নৈবেদ্যর মতোই উত্সর্গ করো| এই নৈবেদ্য আগুনের সাহায্যে তৈরী হবে| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে|” 9 “বিশ্রামের দিন তুমি অবশ্যই এক বছর বয়স্ক 2টি মেষশাবক দেবে| তাদের যেন কোনো খুঁত না থাকে| এছাড়াও তুমি অবশ্যই অলিভ তেলে মিশ্রিত 16 কাপ খুব ভালো মযদার সাহায্যে তৈরী শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য দেবে| 10 এটি এই বিশ্রামের দিনের জন্য বিশেষ নৈবেদ্য| নিয়মিত যে নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য দেওয়া হয় তার সাথে এটি অতিরিক্ত নৈবেদ্য হিসেবে গণ্য হবে|” 11 “প্রত্যেক মাসের প্রথম দিনটিকে তুমি প্রভুকে একটি বিশেষ হোমবলি উত্সর্গ করবে| এই নৈবেদ্যটি হবে এক বছর বয়স্ক 2 টি ষাঁড়, 1 টি মেষ এবং 7 টি মেষশাবক| তাদের যেন অবশ্যই কোন খুঁত না থাকে| 12 প্রত্যেকটি ষাঁড়ের সঙ্গে তুমি অবশ্যই অলিভ তেলে মিশ্রিত 24 কাপ খুব মিহি মযদার শস্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে এবং মেষের সঙ্গে তুমি অবশ্যই অলিভ তেলে মিশ্রিত 16 কাপ খুব মিহি মযদা দিয়ে তৈরী শস্যের নৈবেদ্য দেবে| 13 এছাড়াও প্রত্যেকটি মেষশাবকের সঙ্গে অলিভ তেলে মিশ্রিত 8 কাপ খুব মিহি মযদা দিয়ে তৈরী দানা শস্যের নৈবেদ্য দেবে| এই নৈবেদ্যটি আগুনের সাহায্যে তৈরী হবে| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 14 প্রত্যেকটি ষাঁড়ের সঙ্গে 2 কোযার্ট করে দ্রাক্ষারস, মেষের সঙ্গে 1-1/4 কোযার্ট দ্রাক্ষারস এবং প্রত্যেক মেষশাবকের সঙ্গে 1 কোযার্ করে দ্রাক্ষারস পেয় নৈবেদ্য হিসেবে দিতে হবে| বছরের প্রত্যেক মাসে হোমবলি হিসেবে ঐগুলি অবশ্যই উত্সর্গ করতে হবে| 15 নিয়মিত দৈনিক হোমবলি এবং পেয় নৈবেদ্য ছাড়াও তুমি অবশ্যই প্রভুকে একটি পুরুষ ছাগল দেবে| ঐ ছাগলটি হবে পাপার্থক নৈবেদ্য| 16 “প্রথম মাসের 14 তম দিনটি হবে প্রভুর নিস্তারপর্ব উদ্য়াপনের দিন| 17 ঐ মাসের 15তম দিনে খামিরবিহীন রুটির উত্সব হবে| এই সাত দিন ধরে তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাবে| 18 এই ছুটির প্রথম দিনটিতে অবশ্যই তোমাদের একটি বিশেষ সভা হবে| ঐ দিনে তোমরা কোনো শ্রমসাধ্য কাজ করবে না| 19 তোমরা প্রভুকে হোমের জন্য নৈবেদ্য দেবে| হোমবলির নৈবেদ্যগুলো হবে 2টি ষাঁড়, 1টি মেষ এবং 7টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক| তাদের অবশ্যই যেন কোনো খুঁত না থাকে| 20 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই প্রত্যেকটি ষাঁড়ের সঙ্গে শস্য নৈবেদ্য হিসাবে অলিভ তেলে মিশ্রিত 24 কাপ খুব মিহি মযদা, মেষের সঙ্গে শস্য নৈবেদ্য হিসাবে তেলে মিশ্রিত 16 কাপ খুব মিহি মযদা এবং প্রত্যেকটি মেষশাবকের সঙ্গে শস্য নৈবেদ্য হিসাবে তেলে মিশ্রিত 8 কাপ খুব মিহি মযদা দেবে| 21 22 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই 1টি পুরুষ ছাগল দেবে| তোমাদের পবিত্র করার জন্য ছাগলটি পাপের নৈবেদ্য হিসেবে দেওয়া হবে| 23 প্রতিদিন সকালে তোমরা পোড়ানোর জন্য যে নৈবেদ্য দাও সেটা ছাড়াও তোমরা অবশ্যই ঐ নৈবেদ্যগুলো দেবে| 24 “এই একইভাবে সাতদিনের প্রত্যেকদিন তোমরা অবশ্যই আগুনের সাহায্যে তৈরী নৈবেদ্য এবং তার সঙ্গে পেয় নৈবেদ্য প্রভুকে দেবে| এই সমস্ত নৈবেদ্যর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| প্রত্যেক দিনের হোমবলির সাথে এই নৈবেদ্যগুলো তোমরা অবশ্যই দেবে| 25 “আর সপ্তম দিনে তোমাদের আরেকটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হবে| ঐ দিনে তোমরা কোনো কাজ করবে না| 26 “সাত সপ্তাহের উত্সব চলাকালীন প্রথম ফসলের দিন যখন তোমরা প্রভুর কাছে নতুন ফসলের শস্য নৈবেদ্য নিয়ে আসো সেই সময় একটি পবিত্র সভা হবে| ঐ দিনে তোমরা অবশ্যই কোনো কাজ করবে না| 27 তোমরা অবশ্যই হোমবলি উত্সর্গ করবে| এই নৈবেদ্যটি আগুনের সাহায্যে তৈরী হবে| এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| তোমরা অবশ্যই 2টি ষাঁড়, 1টি মেষ এবং 7টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক উত্সর্গ করবে| তাদের যেন কোনো খুঁত না থাকে| 28 তোমরা অবশ্যই প্রত্যেকটি ষাঁড়ের সঙ্গে তেলে মেশানো 24 কাপ খুব মিহি মযদা, প্রত্যেকটি মেষের সঙ্গে 16 কাপ এবং 29 প্রত্যেকটি মেষশাবকের সঙ্গে 8 কাপ খুব মিহি মযদা দেবে| 30 নিজেদের পবিত্র করার জন্য তোমরা অবশ্যই 1টি পুরুষ ছাগল উত্সর্গ করবে| 31 দৈনিক হোমবলি এবং শস্য নৈবেদ্য ছাড়াও তোমরা ঐ নৈবেদ্যগুলো অবশ্যই দেবে| এ ব্যাপারে অবশ্যই নিশ্চিত হবে যে, যে প্রাণীগুলি বলি দেবে সেগুলির মধ্যে যেন কোনো খুঁত না থাকে এবং সেগুলির সাথে যেন পেয় নৈবেদ্য দেওয়া হয়|
1 “সপ্তম মাসের প্রথম দিনটিতে একটি পবিত্র সভা অনুষ্ঠিত হবে| ঐ দিনে তোমরা কোনো শ্রমসাধ্য কাজ করবে না| শিঙা বাজানোরজন্য ঐ দিনটি নির্দিষ্ট হয়েছে| 2 তোমরা হোমবলি উত্সর্গ করবে| তাদের সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| তোমরা 1টি ষাঁড়, 1টি মেষ এবং 7টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক উত্সর্গ করবে| তাদের যেন কোনো খুঁত না থাকে| 3 তোমরা ষাঁড়ের সঙ্গে 24 কাপ তেল মেশানো খুব মিহি মযদা, পুং মেষের সঙ্গে 16 কাপ 4 এবং 7টি মেষশাবকের প্রত্যেকটির সঙ্গে 8 কাপ করে শস্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে| 5 এছাড়াও নিজেদের পবিত্র করার জন্য পাপের নৈবেদ্যস্বরূপ 1টি পুরুষ ছাগল উত্সর্গ করবে| 6 অমাবস্যার দিনের উত্সর্গ এবং তার শস্যের নৈবেদ্য ছাড়াও এই নৈবেদ্যগুলি অতিরিক্ত এবং দৈনিক উত্সর্গ এবং তার শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য ছাড়াও এগুলো অতিরিক্ত| ঐগুলো অবশ্যই নিয়মানুযাযী করতে হবে| ঐ নৈবেদ্যগুলো অবশ্যই আগুনের সাহায্যে তৈরী করা হবে| তাদের সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| 7 “সপ্তম মাসের দশম দিনটিতে একটি বিশেষ সভা হবে| ঐ দিনটিতে তোমরা অবশ্যই কোনো খাবার খাবে না এবং তোমরা অবশ্যই কোনো শ্রমসাধ্য কাজ করবে না| 8 তোমরা হোমবলি উত্সর্গ করবে| তাদের সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| তোমরা অবশ্যই 1টি ষাঁড়, 1টি পুং মেষ এবং 7টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের যেন অবশ্যই কোনো খুঁত না থাকে| 9 তোমরা অবশ্যই ষাঁড়ের সঙ্গে অলিভ তেলে মিশ্রিত 24 কাপ খুব মিহি মযদা, মেষের সঙ্গে 8 কাপ করে নৈবেদ্য দেবে| 10 11 এছাড়াও পাপের নৈবেদ্যস্বরূপ 1 টি পুরুষ ছাগল উত্সর্গ করবে| প্রায়শ্চিত্তের দিনের পাপের উত্সর্গের সাথে এটিও য়োগ করবে| দৈনিক উত্সর্গ শস্য নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্যর সাথে অতিরিক্ত হিসেবে এই নৈবেদ্যটিও দেওয়া হবে| 12 “সপ্তম মাসের 15তম দিনে একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হবে| এটিই কুটিরবাস পর্ব| ঐ দিনে তোমরা কোনো শ্রমসাধ্য কাজ করবে না| তোমরা অবশ্যই প্রভুর সম্মানার্থে ঐ সাতদিন ধরে উত্সব পালন করবে| 13 তোমরা হোমবলি প্রদান করবে| ঐ নৈবেদ্যগুলো আগুনের সাহায্যে তৈরী হবে| তাদের সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| তোমরা 13টি ষাঁড়, 2টি পুং মেষ এবং 14টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের অবশ্যই যেন কোনো খুঁত না থাকে| 14 তোমরা অবশ্যই 13টি ষাঁড়ের প্রত্যেকটির জন্য তেলে মিশ্রিত 24 কাপ খুব মিহি মযদা, 2টি মেষের প্রত্যেকটির জন্য 16 কাপ করে 15 এবং 14টি মেষশাবকের প্রত্যেকটির জন্য 8 কাপ করে নৈবেদ্য দেবে| 16 এছাড়াও তোমরা 1টি পুরুষ ছাগলও নৈবেদ্য দেবে| এটি অবশ্যই দৈনিক উত্সর্গ শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্যর সাথে অতিরিক্ত হিসাবে য়োগ করা হবে| 17 “এই উত্সবের দ্বিতীয় দিনে তোমরা অবশ্যই 12টি ষাঁড়, 2টি পুং মেষ এবং 14টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের যেন কোনো খুঁত না থাকে| 18 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই ষাঁড়, মেষ এবং মেষশাবকের সঙ্গে ঠিক পরিমাণে শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য দেবে| 19 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই পাপের উত্সর্গের জন্য 1টি পুরুষ ছাগল নৈবেদ্য হিসেবে দেবে| এটি দৈনিক উত্সর্গ এবং তার জন্য দানাশস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য অতিরিক্ত হবে| 20 “এই উত্সবের তৃতীয় দিনে তোমরা অবশ্যই 11টি ষাঁড়, 2টি পুং মেষ এবং 14টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের যেন অবশ্যই কোন খুঁত না থাকে| 21 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই ষাঁড়, মেষ এবং মেষশাবকের সঙ্গে ঠিক পরিমাণে শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য দেবে| 22 এছাড়াও পাপের উত্সর্গের জন্য 1টি পুরুষ ছাগল দেবে| দৈনিক উত্সর্গ শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্যর সাথে এটিও য়োগ করবে| 23 “এই উত্সবের চতুর্থ দিনে তোমরা অবশ্যই 10টি ষাঁড়, 2টি পুং মেষ এবং 14টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের যেন কোনো খুঁত না থাকে| 24 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই ষাঁড়, মেষ এবং মেষশাবকের সঙ্গে ঠিক পরিমাণে শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য দেবে| 25 এছাড়াও তোমরা পাপের উত্সর্গের জন্য 1 টি পুরুষ ছাগলও নৈবেদ্য হিসেবে দেবে| দৈনিক উত্সর্গ শস্যের নৈবেদ্য এবং পানীয় নৈবেদ্যর সাথে অবশ্যই এটিও য়োগ করবে| 26 “এই উত্সবের পঞ্চম দিনে তোমরা অবশ্যই 9টি ষাঁড়, 2টি পুং মেষ এবং 14টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের যেন কোনো খুঁত না থাকে| 27 এছাড়াও তোমরা ষাঁড়, মেষ এবং মেষশাবকের সঙ্গে ঠিক পরিমাণে শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য দেবে| 28 তোমরা পাপের উত্সর্গের জন্য 1টি পুরুষ ছাগলও নৈবেদ্য দেবে| এটি দৈনিক উত্সর্গ, শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্যর সাথে এটিও য়োগ করবে| 29 “এই উত্সবের ষষ্ঠ দিনে তোমরা 8টি ষাঁড়, 2টি পুং মেষ এবং 14টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের যেন অবশ্যই কোনো খুঁত না থাকে| 30 এছাড়াও তোমরা ষাঁড়, মেষ এবং মেষশাবকের সঙ্গে ঠিক পরিমাণে শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য দেবে| 31 পাপের উত্সর্গের জন্য তোমরা 1টি পুরুষ ছাগলও নৈবেদ্য হিসেবে দেবে| এটি দৈনিক উত্সর্গ এবং তার সঙ্গে দানাশস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য অতিরিক্ত হবে| 32 “এই উত্সবের সপ্তম দিনে তোমরা অবশ্যই 7টি ষাঁড়, 2টি পুং মেষ এবং 14টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের যেন কোনো খুঁত না থাকে| 33 এছাড়াও তোমরা ষাঁড়, মেষ এবং মেষশাবকের সঙ্গে ঠিক পরিমাণে নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য দেবে| 34 পাপের উত্সর্গের জন্য তোমরা অবশ্যই 1টি পুরুষ ছাগলও নৈবেদ্য হিসেবে প্রদান করবে| দৈনিক উত্সর্গ এবং তার জন্য শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্যর সাথে এটিও য়োগ করবে| 35 “এই উত্সবের শেষ দিনে অর্থাত্ অষ্টম দিন তোমাদের জন্য এক বিশেষ সভা আযোজিত হবে| ঐ দিনে তোমরা কোনো শ্রমসাধ্য কাজ করবে না| 36 তোমরা অবশ্যই সেদিন হোমবলি প্রদান করবে| আগুনের সাহায্যে তৈরী নৈবেদ্যর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করবে| তোমরা অবশ্যই 1টি ষাঁড়, 1টি পুং মেষ এবং 7টি এক বছর বয়স্ক মেষশাবক নৈবেদ্য দেবে| তাদের যেন অবশ্যই কোনো খুঁত না থাকে| 37 এছাড়াও তোমরা ষাঁড়, মেষ এবং মেষশাবকের সঙ্গে ঠিক পরিমাণে দানাশস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য প্রদান করবে| 38 পাপের উত্সর্গের জন্য 1টি পুরুষ ছাগলও দেবে| দৈনিক হোমবলি এবং তার সাথে শস্যের নৈবেদ্য এবং পেয় যে নৈবেদ্য দেওয়া হয় সেগুলির সাথে এটিও য়োগ করবে| 39 “এই উত্সবের দিনগুলিতে তোমরা অবশ্যই হোমবলি, শস্যের নৈবেদ্য, পেয় নৈবেদ্য এবং মঙ্গল নৈবেদ্য, নিয়ে আসবে এবং ঐ নৈবেদ্যগুলি প্রভুকে প্রদান করবে| যে কোনো প্রকার বিশেষ উপহার, যা তোমরা প্রভুকে প্রদান করতে চাও এবং যে কোনো প্রকার নৈবেদ্য যা তোমাদের বিশেষ প্রতিজ্ঞার একটি অঙ্গ, তার অতিরিক্ত হবে ঐ নৈবেদ্যগুলো|” 40 প্রভু মোশিকে যা যা আজ্ঞা করেছিলেন, মোশি ইস্রায়েলের লোকদের সমস্তই বললেন|
1 ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীর সকল নেতাদের সঙ্গে মোশি এই কথা বললেন, “এগুলো প্রভুর আজ্ঞা: 2 “যদি কোন ব্যক্তি ঈশ্বরকে বিশেষ কিছু দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করে অথবা কোন কিছু থেকে নিজেকে বিরত রাখার প্রতিজ্ঞা করে তাহলে সে যেন তার প্রতিজ্ঞা না ভাঙে| সেই ব্যক্তি যেন অবশ্যই যা প্রতিজ্ঞা করেছিল তা সঠিকভাবে পালন করে| 3 “কোন য়ুবতী স্ত্রীলোক তার পিতার বাড়ীতে থাকার সময় প্রভুকে বিশেষ কিছু দেওয়ার জন্য কোনো বিশেষ প্রতিজ্ঞা করতে পারে| 4 যদি তার পিতা এই প্রতিজ্ঞা সম্পর্কে জেনে থাকে এবং একমত হয়, তাহলে সেই য়ুবতী স্ত্রীলোকটি তার প্রতিজ্ঞা অনুসারে অবশ্যই প্রত্যেকটি কাজ করবে| 5 কিন্তু যদি তার পিতা এই প্রতিষ্ঠার কথা জেনে থাকে এবং সে এই ব্যাপারে একমত না হয়, তাহলে সে যে প্রতিজ্ঞা করেছিল তার থেকে সে মুক্ত, সেই সমস্ত কাজকর্ম তাকে আর করতে হবে না| তার পিতা তাকে সেই কাজ করতে নিষেধ করেছিল, সুতরাং প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন| 6 “কোন স্ত্রীলোক প্রভুকে কিছু দেওয়ার জন্য কোনো বিশেষ প্রতিজ্ঞা করার পর যদি তার বিবাহ হয়, 7 যদি তার স্বামী তার প্রতিজ্ঞার কথা জানতে পারে এবং কোনো প্রতিবাদ না করে, তাহলে সেই স্ত্রীলোক যা প্রতিজ্ঞা করেছিল সেই কাজগুলো অবশ্যই করবে| 8 কিন্তু যদি তার স্বামী তার প্রতিজ্ঞার কথা জানতে পারে এবং তাকে তার প্রতিজ্ঞা পালন করতে দিতে অসম্মত হয়, তাহলে সেই স্ত্রী যা প্রতিজ্ঞা করেছিল সেই সমস্ত কাজ তাকে আর করতে হবে না| তার স্বামী তার স্ত্রীর প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিযেছিল - সেই স্ত্রীকে তার প্রতিজ্ঞানুসারে কাজ করতে দেয নি, সুতরাং প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন| 9 “একজন বিধবা অথবা একজন স্বামী পরিত্যক্তা স্ত্রীলোক কোনো বিশেষ প্রতিজ্ঞা করে থাকতে পারে| যদি সে তা করে, তাহলে সে তার প্রতিজ্ঞানুসারে সমস্ত কিছুই সঠিকভাবে করবে| 10 একজন বিবাহিতা স্ত্রীলোক প্রভুকে কিছু দেওয়ার জন্য কোনো বিশেষ প্রতিজ্ঞা করে থাকতে পারে| 11 যদি তার স্বামী তার প্রতিজ্ঞার কথা জানতে পারে এবং তাকে তার প্রতিজ্ঞা পালন করতে দিতে সম্মত হয়, তাহলে সে তার প্রতিজ্ঞানুসারে সমস্ত কাজ অবশ্যই যথায়থভাবে পালন করবে| সে যা প্রতিজ্ঞা করেছিল সেই অনুসারে সমস্ত কিছু সে অবশ্যই দেবে| 12 কিন্তু যদি তার স্বামী তার প্রতিজ্ঞার কথা জানতে পারে, এবং তাকে তার প্রতিজ্ঞা পালন করতে দিতে অসম্মত হয়, তাহলে সে যা প্রতিজ্ঞা করেছিল সেই সমস্ত কাজ তাকে আর করতে হবে না| সে কি প্রতিজ্ঞা করেছিল তাতে কিছু যায় আসে না, তার স্বামী তার স্ত্রীর প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করাতে পারে| যদি তার স্বামী প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করায, তাহলে প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন| 13 একজন বিবাহিতা স্ত্রীলোক প্রভুকে কোনো কিছু দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করে থাকতে পারে অথবা কোনো বিষযে নিজেকে বঞ্চিত করার জন্য প্রতিজ্ঞা করে থাকতে পারে অথবা সে ঈশ্বরের কাছে অন্য কোনো বিশেষ প্রতিজ্ঞা করতে পারে| তার স্বামী তার প্রতিজ্ঞাগুলোর মধ্যে যে কোনো একটির ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে অথবা ঐ প্রতিজ্ঞাগুলোর মধ্যে যে কোনো একটিকে পালন করতে দিতে পারে| 14 স্বামী যদি প্রতিজ্ঞাগুলোর সম্পর্কে জানতে পেরে সেগুলোর পালনে বাধা না দেয, তাহলে সেই স্ত্রী অবশ্যই প্রতিজ্ঞানুসারে প্রত্যেকটি জিনিস সঠিকভাবে পালন করবে| 15 কিন্তু যদি স্বামী প্রতিজ্ঞার কথা জানতে পারে এবং সেগুলোর পালনে বাধা দেয, তাহলে সে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের জন্য দায়ী থাকবে|” 16 প্রভু মোশিকে ঐ আজ্ঞাগুলো দিলেন| ঐ আজ্ঞাগুলো হল একজন পুরুষ এবং তার স্ত্রীর সম্পর্কে, একজন পিতা এবং তার কন্যার সম্পর্কে, যে কন্যা য়ুবতী অবস্থায় পিতার বাড়ীতে রযেছে|
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “আমি ইস্রায়েলের লোকদের মিদিয়নীয়দের পরাজিত করে প্রতিশোধ নিতে সাহায্য করবো| তারপরে মোশি তুমি মারা যাবে|” 3 সুতরাং মোশি লোকদের বললেন, “তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে সৈন্য হবার জন্য কযেকজনকে বেছে নাও| মিদিয়নীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রভু ঐ সমস্ত লোকদের ব্যবহার করবেন| 4 ইস্রায়েলের প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠী থেকে 1,000 লোক বেছে নাও| 5 সেখানে ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠী থেকে মোট 12,000 সৈন্য থাকবে|” 6 মোশি সেই 12,000 সৈন্যকে যুদ্ধে পাঠালেন| তিনি তাদের সঙ্গে যাজক ইলিয়াসরের পুত্র পীনহসকে পাঠালেন| পীনহস তার সঙ্গে পবিত্র দ্রব্যসামগ্রী, শিঙা ও ভেরী নিলেন| 7 প্রভুর আদেশমতোই ইস্রায়েলের লোকরা মিদিয়নীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করে সমস্ত মিদিয়নীয় লোকদের হত্যা করল| 8 তারা যে সমস্ত লোকদের হত্যা করেছিল তাদের মধ্যে ছিলেন ইবি, রেকম, সূর, হূর এবং রেবা মিদিযনের পাঁচজন রাজা| তারা তরবারির সাহায্যে বিযোরের পুত্র বিলিয়মকেও হত্যা করল| 9 ইস্রায়েলের লোকরা মিদিয়নীয় স্ত্রীদের এবং বাচ্চাদের বন্দী করে নিয়ে এল| এছাড়াও তারা তাদের মেষ, গোরু এবং অন্যান্য জিনিসপত্রও নিয়ে এল| 10 এরপর তারা তাদের সমস্ত শহর এবং গ্রাম পুড়িয়ে দিল| 11 তারা সমস্ত লোকদের, পশুসমূহ এবং যুদ্ধে যা পেয়েছিল তা নিয়ে 12 শিবিরে মোশি, যাজক ইলিয়াসর এবং ইস্রায়েলের অন্যান্য সমস্ত লোকের কাছে এল| ম্পস্রাযেলের লোকরা এইসময় মোয়াবের য়র্দনের উপত্যকায শিবির স্থাপন করেছিল| এটি ছিল যিরীহোর অপর পারে যর্দন নদীর পূর্বদিকে| 13 আর মোশি, যাজক ইলিয়াসর এবং ইস্রায়েলের নেতারা সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করার জন্য শিবির থেকে বেরিয়ে এলেন| 14 মোশি 1,000 সৈন্যের সেনাপতি এবং 100 সৈন্যের সেনাপতি, যারা যুদ্ধ থেকে ফিরে এসেছিল তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| 15 মোশি তাদের বললেন, “তোমরা কেন স্ত্রীলোকদের বেঁচে থাকতে দিয়েছো? 16 পিযোরের বিলিয়মের ঘটনার সময় এই সব স্ত্রীলোকরাই প্রভুর কাছ থেকে ইস্রায়েলীয় পুরুষদের দূরে সরিয়ে দিয়েছিল এবং সেই জন্যই প্রভুর লোকদের মধ্যে মহামারী হয়েছিল| 17 এখন সমস্ত মিদিয়নীয় ছেলেদের হত্যা করো| সমস্ত মিদিয়নীয় স্ত্রীলোকদের হত্যা করো যাদের কোনো না কোনো পুরুষের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক ছিল| 18 তুমি সমস্ত য়ুবতী মেয়েদের বাঁচতে দিতে পারো| কিন্তু কেবল তখনই যদি তাদের সঙ্গে কোনো পুরুষের য়ৌন সম্পর্ক না থেকে থাকে| 19 এরপর তোমরা যারা অন্যান্য লোকদের হত্যা করেছ তাদের প্রত্যেকে অবশ্যই শিবিরের বাইরে সাতদিন থাকবে| তোমরা যদি কেবলমাত্র মৃতদেহ স্পর্শ করে থাকো তাহলেও তোমাদের শিবিরের বাইরে থাকতে হবে| তৃতীয় দিনে তোমরা এবং তোমাদের বন্দীরা অবশ্যই নিজেদের পবিত্র করবে| সপ্তম দিনে তোমরা পুনরায অবশ্যই এই একই কাজ করবে| 20 তোমরা অবশ্যই তোমাদের সমস্ত পরিধেয বস্ত্র ধোবে| চামড়া, পশম অথবা কাঠের তৈরী যে কোনো জিনিসই তোমরা অবশ্যই ধোবে এবং শুচি হবে|” 21 “এরপর যাজক ইলিয়াসর সৈন্যদের বললেন, “ঐ নিয়মগুলো প্রভু মোশিকে দিয়েছন| ঐ নিয়মগুলো সেইসব সৈন্যদের জন্য, যারা যুদ্ধ থেকে ফিরে আসছে| 22 কিন্তু আগুনে দেওয়া যাবে এমন দ্রব্যসামগ্রীর সম্পর্কে নিয়ম আলাদা| তোমরা অবশ্যই সোনা, রূপো, পিতল, লোহা, টিন অথবা সীসা আগুনের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাবে এবং তারপর ঐ জিনিসগুলোকে জল দিয়ে পরিষ্কার করবে তাহলে সেগুলো পবিত্র হবে| যদি কোনো দ্রব্যসামগ্রীকে আগুনে রাখা না যায়, তাহলে তোমরা অবশ্যই সেগুলোকে জল দিয়ে পরিষ্কার করবে| 23 24 সপ্তম দিনে তোমরা তোমাদের সমস্ত জামাকাপড় পরিষ্কার করবে এবং তখন তোমরা শুচি হবে| এরপরে তোমরা শিবিরের মধ্যে আসতে পারবে|” 25 এরপরে প্রভু মোশিকে বললেন, 26 “তুমি, যাজক ইলিয়াসর এবং সমস্ত নেতারা সমস্ত বন্দীদের, পশুদের এবং সৈন্যরা যুদ্ধে যেসব দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে এসেছিল সেগুলো গণনা করবে| 27 এরপর ঐসব দ্রব্যসামগ্রী সৈন্যদের মধ্যে যারা যুদ্ধে গিয়েছিল এবং ইস্রায়েলের বাকী অন্যান্য লোকদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেবে| 28 যুদ্ধে গিয়েছিল এমন সৈন্যদের কাছ থেকে ঐসব দ্রব্যসামগ্রীর কিছু অংশ কর হিসাবে নিয়ে নাও; সেই অংশটি হবে প্রভুর| প্রত্যেক 500টি দ্রব্যসামগ্রীর জন্য একটি করে দ্রব্যসামগ্রী প্রভুর হবে| এই সব দ্রব্যসামগ্রীর অন্তর্ভুক্ত হল মানুষ, গরু, গাধা এবং মেষ| 29 সৈন্যরা যুদ্ধ থেকে লুঠ করে যেসব দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে এসেছিল তার অর্ধেক ভাগ দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে নাও| এরপর ঐসব দ্রব্যসামগ্রী যাজক ইলিয়াসরকে দিয়ে দাও| ঐ অংশটি হবে প্রভুর| 30 এবং তারপর ইস্রায়েলের লোকদের অংশের অর্ধেক থেকে, প্রত্যেক 50টি দ্রব্যসামগ্রীর জন্য একটি করে জিনিস নাও| এই সব দ্রব্যসামগ্রীর মধ্যে মানুষ, গরু, গাধা, মেষ অথবা অন্য যে কোনো পশু অন্তর্ভুক্ত থাকবে| ঐ অংশটি লেবীয়দের দিয়ে দাও কারণ লেবীয়রা প্রভুর পবিত্র তাঁবুর যত্ন করে|” 31 প্রভু মোশিকে যা আজ্ঞা করেছিলেন মোশি এবং ইলিয়াসর ঠিক সেই মতোই কাজ করলেন| 32 সৈন্যরা 6,75,000 মেষ, 33 72,000 গরু, 34 61,000 গাধা, 35 এবং 32,000 স্ত্রীলোক সঙ্গে নিয়ে এসেছিল| (ওরা সেইসব স্ত্রীলোক যাদের কোনো পুরুষের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক ছিল না|) 36 যে সব সৈন্যরা যুদ্ধে গিয়েছিল তাদের প্রাপ্য়ের অর্ধেক অংশ হল 3,37,500 টি মেষ| 37 তারা প্রভুকে 675 টি মেষ দিয়েছিল| 38 সৈন্যরা 36,000 টি গোরু পেয়েছিল| তারা 72টি গোরু প্রভুকে দিয়েছিল| 39 সৈন্যরা 30,500 টি গাধা পেয়েছিল| তারা প্রভুকে 61টি গাধা দিয়েছিল| 40 সৈন্যরা 16,000 স্ত্রীলোক পেয়েছিল| তারা প্রভুকে কর হিসেবে 32 জন স্ত্রীলোক দিয়েছিল| 41 প্রভু মোশিকে যেমন আদেশ করেছিলেন সেই আদেশমতোই তিনি যাজক ইলিয়াসর প্রভুর জন্য ঐ সকল উপহার সামগ্রী দিয়েছিলেন| 42 সৈন্যদের দ্বারা লুন্ঠিত দ্রব্য়ের অর্ধেক, যা মোশি ইস্রায়েলের লোকদের জন্য আলাদা করেছিলেন তা গণনা করে দেখা গেল| 43 লোকরা 3,37,500 টি মেষ, 44 36,000 গোরু, 45 30,500 গাধা, 46 এবং 16,000 স্ত্রীলোক পেয়েছিল| 47 মোশি প্রভুর জন্য প্রত্যেক 50টি দ্রব্যসামগ্রী পিছু একটি করে জিনিস নিয়েছিলেন| এর মধ্যে পশু এবং মানুষ অন্তর্ভুক্ত ছিল| এরপর তিনি ঐ সকল দ্রব্য সামগ্রী লেবীয়দের দিয়েছিলেন, কারণ তারা প্রভুর পবিত্র তাঁবুর রক্ষণাবেক্ষণ করত| প্রভু যেমন আদেশ করেছিলেন মোশি ঠিক সেভাবেই এই কাজটি করলেন| 48 এরপর সৈন্যদের নেতারা (1,000 জন পুরুষের উর্দ্ধতন নেতারা এবং 100 জন পুরুষের উর্দ্ধতন নেতারা) মোশির কাছে এলেন| 49 তাঁরা মোশিকে বললেন, “আমরা, আপনার সেবকরা, আমাদের সৈন্যদের গণনা করেছি| আমরা তাদের কাউকেই বাদ দিই নি| 50 সুতরাং আমরা প্রত্যেক সৈন্যর কাছ থেকে প্রভুর উপহার নিয়ে এসেছি| আমরা সোনার তৈরী বাহু-বন্ধনী, কব্জির অলংকার, আংটি, মাকড়ি এবং কন্ঠহার নিয়ে এসেছি| আমাদের শুচি করার জন্য প্রভুকে এই সকল উপহার দেওয়া হচ্ছে|” 51 সুতরাং মোশি সোনা দিয়ে তৈরী ঐ সমস্ত দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে সেগুলো যাজক ইলিয়াসরকে দিলেন| 52 1,000 জন পুরুষের উর্দ্ধতন নেতারা এবং 100 জন পুরুষের উর্দ্ধতন নেতারা যে সোনা দিয়েছিলেন তার মোট ওজন ছিল প্রায় 420 পাউণ্ড| 53 সৈন্যরা যুদ্ধ থেকে যে সকল দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে এসেছিল তার বাকী অংশ তারা নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছিল| 54 প্রতি 1,000 জন পুরুষের উর্দ্ধতন নেতাদের কাছ থেকে এবং প্রতি 100 জন পুরুষের উর্দ্ধতন নেতাদের কাছ থেকে সোনা নিয়ে মোশি এবং যাজক ইলিয়াসর সেই সোনা সমাগম তাঁবুতে রাখলেন| প্রভুর সামনে এই উপহার ইস্রায়েলের লোকদের জন্য স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে ছিল|
1 রূবেণ এবং গাদের পরিবারগোষ্ঠীতে অনেক গবাদি পশু ছিল| ঐ লোকরা যাসের ও গিলিয়দের কাছে জমি দেখেছিল| তারা দেখল যে, এই জমিটি তাদের পশুদের কাছে খুবই উপযোগী| 2 সেই কারণে রূবেণ এবং গাদের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা মোশি, যাজক ইলিয়াসর এবং লোকদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলল| 3 তারা বলল, “আমাদের অর্থাত্ আপনাদের সেবকদের অনেক গবাদি পশু আছে এবং যে জমি প্রভু ইস্রায়েলীয়দের জন্য জয় করেছিলেন সেটি পশুদের পক্ষে খুবই উপযোগী| এই দেশের অন্তর্ভুক্ত জায়গাগুলো ছিল অষ্টারোত্, দীবোন, যাসের, নিম্রা, হিষ্বোন, ইলিয়ালী, সেবাম, নবো ও বিযোন| 4 5 তারা বলল, “যদি আপনার খুশী হয় তাহলে এই জায়গাটি আমাদের দিয়ে দিতে পারেন| আমাদের যর্দন নদীর অপর পাশে নিয়ে যাবেন না|” 6 মোশি রূবেণ এবং গাদের পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের বললেন, “তোমরা যখন এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে তখন কি তোমরা তোমাদের ভাইদের যুদ্ধে যেতে দেবে? 7 তোমরা ইস্রায়েলের লোকদের নিরুত্সাহ করার চেষ্টা করছ কেন? তোমরা তাদের নিরুত্সাহ করছ যাতে তারা নদী পার না হয় এবং ঈশ্বর তাদের যে দেশ দিয়েছেন সেই দেশ অধিগ্রহণ না করে! 8 তোমাদের পিতারাও আমার সঙ্গে ঠিক একই ব্যবহার করেছিল| কাদেশ-বর্ণেয় দেশটি দেখার জন্য আমি কিছু গুপ্তচর সেখানে পাঠিয়েছিলাম| 9 ঐ সমস্ত লোকরা ইষ্কোলের উপত্যকা পর্য়ন্ত গিয়েছিল| তারা দেশটি দেখেছিল এবং ঐ সমস্ত লোকরা ইস্রায়েলের লোকদের এতটাই নিরুত্সাহ করেছিল যে প্রভু তাদের যে জায়গা দিয়েছিলেন, সেখানে যেতেও তারা অস্বীকার করেছিল| 10 প্রভু ঐ লোকদের প্রতি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন; 11 ‘মিশর থেকে এসেছে এমন 20 বছর অথবা তার বেশী বয়স্ক কোনো লোকই সেই দেশ দেখার অনুমতি পাবে না যে দেশ আমি অব্রাহাম, ইস্হাক এবং যাকোবের কাছে দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম| কিন্তু তারা সঠিকভাবে আমাকে অনুসরণ করে নি| সুতরাং কালেব এবং যিহোশূয় ছাড়া আর কেউ এই দেশ পাবে না| 12 কারণ কনিসীয গোষ্ঠীভুক্ত য়িফূন্নির পুত্র কালেব এবং নূনের পুত্র যিহোশূয় প্রভুকে সঠিকভাবে অনুসরণ করেছিল!’ 13 “ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি প্রভু প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| সেই কারণে প্রভু ঐ লোকদের 40 বছর মরুভূমিতে বাস করতে বাধ্য করেছিলেন| যারা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপকার্য় করেছিল তাদের সকলকেই প্রভু তাদের মৃত্যু পর্য়ন্ত মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াতে বাধ্য করেছিলেন| 14 তোমাদের পিতারা যে কাজ করেছিলেন এখন তোমরা সেই একই কাজের পুনরাবৃত্তি করছো| তোমরা পাপী লোকরা, তোমরা কি চাও যে, প্রভু তার লোকদের বিরুদ্ধে আগের থেকেও আরও বেশী ক্রুদ্ধ হন? 15 তোমরা যদি প্রভুকে অনুসরণ করা ছেড়ে দাও, তাহলে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের আরও দীর্ঘদিনের জন্য মরুভূমিতে থাকতে বাধ্য করবেন| এই ভাবে তোমরা এই সমস্ত লোকদের ধ্বংস করবে|” 16 কিন্তু রূবেণের এবং গাদের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা মোশির কাছে গিয়ে বলল, “আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য এখানে শহর তৈরী করবো এবং আমাদের পশুর জন্য খোঁযাড় গড়ে তুলবো| 17 তাহলে আমাদের সন্তানরা এই দেশে বসবাসকারী অন্যান্য লোকদের থেকে নিরাপদে থাকতে পারবে| কিন্তু আমরা খুব খুশী মনেই এগিয়ে এসে ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের সাহায্য করব যে পর্য়ন্ত না তাদের নিজেদের দেশে নিয়ে আসব| 18 ইস্রায়েলের প্রত্যেকে তার জমির অংশ না পাওয়া পর্য়ন্ত আমরা বাড়ী ফিরবো না| 19 যর্দন নদীর পশ্চিম দিকের কোনো জমি আমরা দেবো না| যর্দন নদীর কেবলমাত্র পূর্বদিকের জমিই আমাদের|” 20 সুতরাং মোশি তাদের বললেন, “তোমরা যদি এগুলোর সবটাই করো, তাহলে এই জমি তোমাদের হবে; কিন্তু তোমাদের সৈন্যদের অবশ্যই প্রভুর সামনে যুদ্ধে যেতে হবে| 21 তোমাদের সৈন্যরা অবশ্যই যর্দন নদীর পার করবে এবং শত্রুদের দেশত্যাগ করতে বাধ্য করবে| 22 প্রভু আমাদের সবাইকে জমি অধিগ্রহণ করতে সাহায্য করার পরে, তোমরা বাড়ী ফিরে যেতে পারো| তখন প্রভু এবং ইস্রায়েলের লোকরা তোমাদের দোষী মনে করবে না| তখন প্রভু তোমাদের এই জমি নিতে দেবেন| 23 কিন্তু তোমরা যদি এইগুলো না করো, তাহলে তোমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করবে এবং এটা নিশ্চিত জেনে রেখো যে, তোমরা তোমাদের পাপের জন্য শাস্তি পাবে| 24 তোমরা তোমাদের সন্তানদের জন্য শহর এবং তোমাদের পশুদের জন্য খোঁযাড় তৈরী করো; কিন্তু তোমরা যা শপথ করেছিলে সেগুলো অবশ্যই কোরো|” 25 তখন গাদের এবং রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা মোশিকে বলল, “আমরা আপনার সেবক, আপনি আমাদের গুরু, সুতরাং আপনি যা বলবেন আমরা সেটাই করব| 26 আমাদের স্ত্রীরা, সন্তানরা এবং আমাদের সমস্ত পশু গিলিয়দের শহরগুলোতে থাকবে| 27 কিন্তু আমরা, আপনার সেবকরা যর্দন নদী পার হব| আমাদের প্রভুর কথামতো আমরা প্রভুর সামনে যুদ্ধের জন্য এগিয়ে যাবো|” 28 সুতরাং মোশি, যাজক ইলিয়াসর, নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীগুলোর সমস্ত নেতাদের তাদের বিষয এই নির্দেশ দিলেন| 29 মোশি তাদের বললেন, “গাদ এবং রূবেণের মানুষ যর্দন নদী পার হবে এবং প্রভুর সামনে থেকে যুদ্ধে যাবে| তারা তোমাদের সেই দেশ নিতে সাহায্য করবে এবং তাদের দেশের অংশ হিসেবে তুমি গিলিয়দের দেশ দিয়ে দেবে| 30 তারা প্রতিজ্ঞা করেছে যে কনান দেশ অধিকার করতে তারা তোমাদের সাহায্য করবে| কিন্তু যদি তারা তোমাদের সৈন্যদের সঙ্গে পার না হয় তাহলে তারা কেবলমাত্র কনানে একটি অপেক্ষাকৃত ছোট জমির অংশ পাবে|” 31 গাদ এবং রূবেণের লোকরা উত্তর দিল, “প্রভু যা আদেশ করেছেন ঠিক সেটা করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতি করেছি| 32 আমরা প্রভুর সামনে যর্দন নদী পার হয়ে কনান দেশে যাব, কিন্তু যর্দন নদীর পূর্বদিকের দেশই হল আমাদের অংশ|” 33 সুতরাং গাদের লোকদের, রূবেণের লোকদের এবং মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেক লোককে মোশি সেই দেশ দিয়েছিলেন| (মনঃশি ছিলেন য়োষেফের পুত্র|) ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের রাজ্য এবং বাশনের রাজা ওগের রাজ্য সেই দেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল| ঐ জায়গার আশেপাশের সমস্ত ঐ শহর ঐ দেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল| 34 গাদের লোকরা দীবোন, অটারোত্ ও অরোযের এবং 35 অটারোত্-শোফন, যাসের ও য়গ্বিহ এবং 36 বৈত্-নিম্রা ও বৈত্-হারণ শহরগুলি খুব শক্ত প্রাচীর দিয়ে গড়ে তুলেছিল এবং পশুদের জন্য খোঁযাড় তৈরী করেছিল| 37 রূবেণের লোকরা হিষ্বোন, ইলিয়ালী, কিরিযাথযিম, 38 নবো, বাল্-মিযোন এবং সিব্মা শহর গড়ে তুলেছিল| তারা তাদের পুর্নগঠিত শহরগুলোর আগের নামগুলোই রেখেছিল কিন্তু নবো এবং বাল্-মিযোনের নাম পরিবর্তন করেছিল| 39 মনঃশির পুত্র মাখীরের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা গিলিয়দে গিয়ে সেখানে বসবাসকারী ইমোরীয়দের পরাজিত করেছিল| 40 সেই কারণে মোশি মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর মাখীরকে গিলিয়দ দিলেন এবং তাদের পরিবার সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করল| 41 মনঃশি গোষ্ঠীর যাযীর সেখানকার ছোটো ছোটো গ্রামগুলোকে অধিকার করল| এরপর সে ঐ গ্রামগুলোর নাম দিয়েছিল যাযীরের শহর সকল| 42 কনাত্ এবং এর কাছের ছোটো ছোটো শহরগুলোকে নোবহ পরাজিত করেছিল| এরপর সে নিজের নামানুসারে সেই জায়গার নামকরণ করেছিল|
1 মোশি এবং হারোণ মিশর থেকে ইস্রায়েলের লোকদের নেতৃত্ব দিয়ে বিভিন্ন দলে ভাগ করে নিয়ে গিয়েছিলেন| 2 তারা যে জায়গাগুলোতে ভ্রমণ করেছিল, প্রভুর আজ্ঞা অনুযায়ীমোশি সে জায়গাগুলো সম্পর্কে লিখেছিলেন| তাদের যাত্রার পর্য়াযগুলি এখানে দেওয়া হল: 3 প্রথম মাসের 15তম দিনে তারা রামিষেষ ত্যাগ করেছিল| সেই দিন সকালে নিস্তারপর্বের পরে ইস্রায়েলের লোকরা জয়ের ভঙ্গীতে তাদের হাত উঁচু করে মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিল| মিশরের সমস্ত লোক তাদের দেখেছিল| 4 প্রভু যাদের হত্যা করেছিলেন সেই প্রথমজাতদের মিশরীয়রা সেই সময় কবর দিচ্ছিল| মিশরের দেবগণের বিরুদ্ধেও প্রভু তাঁর বিচার দেখিয়েছিলেন| 5 ইস্রায়েলের লোকরা রামিষেষ ত্যাগ করে সুক্কোতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল| 6 সুক্কোত্ থেকে তারা এথমের দিকে যাত্রা করেছিল| লোকরা সেখানে মরুভূমির প্রান্তে শিবির স্থাপন করেছিল| 7 তারা এথম ত্যাগ করে পী-হহীরোতের দিকে যাত্রা করেছিল| এই জায়গাটি বাল-সফোনের কাছে ছিল| লোকরা মিগ্দোলের কাছে শিবির স্থাপন করেছিল| 8 লোকরা পী-হহীরোত ত্যাগ করে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে হেঁটেছিল| তারা মরুভূমির দিকে গিয়েছিল, এরপর তিন দিন ধরে এথম মরুভূমির মধ্য দিয়ে হেঁটেছিল| লোকরা মারা নামক স্থানে শিবির স্থাপন করেছিল| 9 লোকরা মারা ত্যাগ করে এলীমে গিয়েছিল এবং সেখানেই শিবির স্থাপন করেছিল| সেখানে 12টি ঝর্ণা এবং 70টি খেজুর গাছ ছিল| 10 লোকরা এলীম ত্যাগ করে সূফ সাগরের কাছে শিবির স্থাপন করেছিল| 11 সূফ সাগর ত্যাগ করার পরে লোকরা সীন মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করেছিল| 12 এরপর সীন মরুভূমি ত্যাগ করে দপ্কাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 13 দপ্কা ত্যাগ করে আলুশে শিবির স্থাপন করেছিল| 14 আলুশ ত্যাগ করে রফীদীমে শিবির স্থাপন করেছিল| সেই স্থানে লোকদের পান করার উপযোগী কোনো জল ছিল না| 15 লোকরা রফীদীম ত্যাগ করে সীনয় মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করেছিল| 16 সীনয় মরুভূমি ত্যাগ করে কিব্রোত্-হত্তাবাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 17 লোকরা কিব্রোত্-হত্তাবা ত্যাগ করে হত্সেরোতে শিবির স্থাপন করেছিল| 18 হত্সেরোত ত্যাগ করার পরে রিত্মোত শিবির স্থাপন করেছিল| 19 রিত্মা ত্যাগ করে রিম্মোণ-পেরসে শিবির স্থাপন করেছিল| 20 রিম্মোণ-পেরস ত্যাগ করে লিব্নাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 21 লিব্না ত্যাগ করে রিস্সাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 22 রিস্বা ত্যাগ করে কহেলাথায শিবির স্থাপন করেছিল| 23 কহেলাথা ত্যাগ করে শেফর পর্বতে শিবির স্থাপন করেছিল| 24 শেফর পর্বত ত্যাগ করে হরাদাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 25 হরাদা ত্যাগ করে মখেলোতে শিবির স্থাপন করেছিল| 26 মখেলোত্ ত্যাগ করে তহতে শিবির স্থাপন করেছিল| 27 তহত্ ত্যাগ করে তেরহতে শিবির স্থাপন করেছিল| 28 তেরহ ত্যাগ করে মিত্কাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 29 মিত্কা ত্যাগ করে হশ্মোনাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 30 হশ্মোনা ত্যাগ করে মোষেরোতে শিবির স্থাপন করেছিল| 31 মোষেরোত্ ত্যাগ করে বনেযাকনে শিবির স্থাপন করেছিল| 32 বনেযাকন ত্যাগ করে হোর্-হগিদ্গদে শিবির স্থাপন করেছিল| 33 হোর্-হগিদ্গদে ত্যাগ করে য়ট্বাথাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 34 য়ট্বাথা ত্যাগ কের অব্রোণাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 35 অব্রোণা ত্যাগ করে ইত্সিযোন-গেবরে শিবির স্থাপন করেছিল| 36 ইত্সিযোন গেবর ত্যাগ করে সীন মরুভূমির কাদেশে শিবির স্থাপন করেছিল| 37 কাদেশ ত্যাগ করে হোরে শিবির স্থাপন করেছিল| ইদোম দেশের সীমান্তে এই পর্বতটি ছিল| 38 যাজক হারোণ প্রভুর কথা মান্য করে হোর পর্বতের ওপরে গিয়েছিলেন| সেই জায়গায় পঞ্চম মাসের প্রথম দিনে হারোণ মারা গিয়েছিলেন| ইস্রায়েলের লোকরা মিশর ত্যাগ করার পরে সেইটি ছিল 40তম বছর| 39 হোর পর্বতের ওপরে মারা যাওয়ার সময় হারোণের বয়স ছিল 123 বছর| 40 কনান দেশের নেগেভে অরাদ নামে একটি শহর ছিল| সেই শহরে কনানের রাজা শুনেছিলেন যে ইস্রায়েলের লোকরা আসছে| 41 লোকরা হোর পর্বত ত্যাগ করেছিল এবং সল্মোনাতে শিবির স্থাপন করেছিল| 42 লোকরা সল্মোনা ত্যাগ করে পূনোনে শিবির স্থাপন করেছিল| 43 পূনোন ত্যাগ করে ওবোতে শিবির স্থাপন করেছিল| 44 ওবোত্ ত্যাগ করে ম্পযী-অবারীমে শিবির স্থাপন করেছিল| এই জায়গাটি মোয়াব দেশের সীমান্তে অবস্থিত ছিল| 45 লোকরা ইযীম (ইযী-অবারীমে) ত্যাগ করে দীবোন-গাদে শিবির স্থাপন করেছিল| 46 দীবোন-গাদ ত্যাগ করে অল্মোন-দিব্লাথযিমে শিবির স্থাপন করেছিল| 47 অল্মোন-দিব্লাথযিম ত্যাগ করে নবোর কাছে অবারীম পর্বতের ওপরে শিবির স্থাপন করেছিল| 48 অবারীম পর্বত ত্যাগ করে মোয়াবের যর্দন উপত্যকায শিবির স্থাপন করেছিল| যিরীহোর অপর পারে যর্দন নদীর কাছে এই জায়গাটি ছিল| 49 তারা মোয়াবের যর্দন উপত্যকায যর্দন নদী বরাবর শিবির স্থাপন করেছিল| তাদের শিবির বৈত্-য়িশীমোত্ থেকে আবেল-শিটীম পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল| 50 সেই স্থানে প্রভু মোশিকে বললেন, 51 “ইস্রায়েলের লোকদের এই কথাগুলি বলো: তোমরা যর্দন নদী পার হয়ে কনানের অভ্য়ন্তরে প্রবেশ করবে| 52 সেখানকার অধিবাসীদের তোমরা দূর করে দেবে| তোমরা তাদের সমস্ত খোদাই করা মূর্ত্তি ও প্রতিমাদের ধ্বংস করবে এবং তাদের পূজার সমস্ত উচ্চস্থানগুলো ধ্বংস করবে| 53 তোমরা সেই জায়গা অধিকার করে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করবে, কারণ আমিই সেই জায়গাটি তোমাদের দিচ্ছি| এই জায়গাটি কেবলমাত্র তোমাদের গোষ্ঠীগুলির হবে| 54 তোমাদের গোষ্ঠীর প্রত্যেকে এই দেশের অংশ পাবে| তোমরা ঘুঁটি চেলে সিদ্ধান্ত নেবে কোন পরিবার দেশের কোন অংশ পাবে| বড় পরিবার দেশের বড় অংশ পাবে| ছোটো পরিবার দেশের ছোট অংশ পাবে| চালা ঘুঁটি দেখিয়ে দেবে কোন পরিবার দেশের কোন অংশ পাবে| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী দেশে তার অংশ পাবে| 55 “তোমরা যদি ঐ দেশের অধিবাসীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য না কর তবে যাদের তোমরা থাকতে দেবে, তারা তোমাদের সামনে প্রচুর সমস্যা নিয়ে আসবে| তারা হবে তোমাদের চোখে বালির মতো এবং তোমাদের পাশে কাঁটার মতো হবে| তোমরা যেখানে বাস করবে সেখানে তারা প্রচুর সমস্যা নিয়ে আসবে| 56 তোমরা যদি ঐ সমস্ত লোকদের তোমাদের দেশে থাকতে দাও, তাহলে আমি তাদের প্রতি যা করতে চেয়েছিলাম তা তোমাদের প্রতি করবো|”
1 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের এই আদেশ দাও| তোমরা কনান দেশে আসছো| তোমরা এই দেশকে পরাজিত করবে| তোমরা সমগ্র কনান দেশটিকে অধিগ্রহণ করবে| 3 দক্ষিণ দিকে তোমরা ইদোমের কাছে সীন মরুভূমির কিছু অংশ পাবে| লবণ সাগরের দক্ষিণ প্রান্তে তোমাদের দক্ষিণ সীমান্ত শুরু হবে| 4 এটি অক্রব্বীমের দক্ষিণ দিক অতিক্রম করবে| এটি সীন মরুভূমির মধ্য দিয়ে যাবে কাদেশ-বর্ণেযের এবং তারপরে হত্সর-অদ এবং তারপরে এটি অস্মোনের মধ্য দিয়ে যাবে| 5 অস্মোন থেকে এই সীমান্ত মিশরের নদী পর্য়ন্ত বিস্তৃত হবে এবং এটি শেষ হবে ভূমধ্যসাগরে| 6 তোমাদের পশ্চিম সীমান্ত হবে ভূমধ্যসাগর| 7 তোমাদের উত্তর সীমান্ত শুরু হবে ভূমধ্যসাগর থেকে এবং এটি বিস্তৃত হবে, হোর পর্বত লিবানোন পর্য়ন্ত| 8 হোর পর্বত থেকে এটি লেবো হমাত পর্য়ন্ত যাবে এবং তারপরে সদাদ পর্য়ন্ত| 9 এরপর সেই সীমান্ত সিফ্রোণ পর্য়ন্ত যাবে এবং এটি শেষ হবে হত্সর-ঐননে| সুতরাং সেটিই তোমাদের উত্তর সীমান্ত| 10 তোমাদের পূর্ব সীমান্ত শুরু হবে হত্সর-ঐননে এবং এটি শফাম পর্য়ন্ত যাবে| 11 শফাম থেকে সীমান্তটি ঐনের পূর্ব দিকে রিব্লা পর্য়ন্ত যাবে| সীমান্তটি কিন্নেরত্ হ্রদের পাশে পাহাড়ের সীমান্ত বরাবর বিস্তৃত হবে| 12 এরপর সীমান্তটি যর্দন নদীর সীমান্ত বরাবর বিস্তৃত থাকবে| এটি লবণ সাগরে গিয়ে শেষ হবে| ঐগুলোই হল তোমার দেশের চারধারের সীমানা|” 13 সেই কারণে মোশি ইস্রায়েলের লোকদের এই আদেশ দিয়েছিলেন, “এই সেই দেশ যেটি তোমরা পাবে এবং নয়টি গোষ্ঠী ও মনঃশির গোষ্ঠীর অর্ধেকের মধ্যে ভূমিটিকে ভাগ করে দেওয়ার জন্য তোমরা ঘুঁটি চালবে| 14 রূবেণ ও গাদের পরিবারগোষ্ঠী এবং মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেক তাদের দেশ বেছে নিয়েছে| 15 ঐ দুটি এবং অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠী যিরীহোর কাছের দেশ নিয়েছিল| তারা যর্দন নদীর পূর্বদিকের জমি নিয়েছিল|” 16 এরপর প্রভু মোশিকে বললেন, 17 “দেশ ভাগ করে দেওয়ার কাজে, এই সমস্ত লোকরা তোমাকে সাহায্য করবে: যাজক ইলিয়াসর, নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং 18 সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর নেতারা| সেখানে প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী থেকে একজন করে নেতা থাকবেন| ঐ সমস্ত লোকরা দেশ ভাগ করবে| 19 এইগুলো হলো নেতাদের নাম:যিহূদা পরিবারগোষ্ঠী থেকে য়িফূন্নির পুত্র কালেব| 20 শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে অম্মীহূদের পুত্র শমূয়েল| 21 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠী থেকে কিশ্লোনের পুত্র ইলীদদ| 22 দানের পরিবারগোষ্ঠী থেকে য়গ্লির পুত্র বুক্কি| 23 য়োষেফের উত্তরপুরুষদের মধ্য থেকে মনঃশির পরিবারগোষ্ঠী থেকে এফোদের পুত্র হন্নীযেল| 24 ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠী থেকে শিপ্তনের পুত্র কমূযেল| 25 সবূলূন পরিবারগোষ্ঠী থেকে পর্ণকের পুত্র ইলীষাফণ| 26 ইষাখর পরিবারগোষ্ঠী থেকে অস্সনের পুত্র পল্টিযেল| 27 আশের পরিবারগোষ্ঠী থেকে শলোমির পুত্র অহীহূদ| 28 নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠী থেকে অম্মীহূদের পুত্র পদহেল|” 29 ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে কনানের জমি ভাগ করে দেওয়ার জন্য প্রভু ঐ সমস্ত লোকদের মনোনীত করেছিলেন|
1 প্রভু মোশির সঙ্গে কথা বললেন| এটি হয়েছিল যিরীহোর অপর পারে যর্দন নদীর কাছে মোয়াবের যর্দন উপত্যকায| প্রভু বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের বলো, তাদের জমির অংশ থেকে কিছু শহর লেবীয়দের দিতে| ইস্রায়েলের লোকদের উচিত্ ঐ সমস্ত শহর এবং তার আশেপাশের পশুচারণের উপযোগী জমিগুলি লেবীয়দের দিয়ে দেওয়া| 3 লেবীয়রা ঐ সমস্ত শহরে বাস করতে সক্ষম হবে| আর লেবীয়দের সমস্ত গোরু এবং অন্যান্য পশু ঐ শহরের আশেপাশের চারণোপয়োগী ভূমি থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হবে| 4 যে পরিমাণ জমি তোমরা লেবীয়দের দেবে, তা হল শহরের প্রাচীরের থেকে 1,500 ফুট বাইরের সমস্ত জমি| 5 এছাড়াও শহরের পূর্বদিকের 3,000 ফুট দূরত্ব পর্য়ন্ত সমস্ত জমি, শহরের পশ্চিম দিকের 3,000 ফুট দূরত্ব পর্য়ন্ত সমস্ত জমি, এবং শহরের উত্তর দিকে 3,000 ফুট দূরত্ব পর্য়ন্ত সমস্ত জমি লেবীয়দের হবে| (ঐ সমস্ত জমির মাঝখানে শহরটি থাকবে|) 6 ঐ শহরগুলোর মধ্যে ছয়টি শহর হবে নিরাপত্তার জন্য| যদি কোনো ব্যক্তি ঘটনাচক্রে কাউকে হত্যা করে, তাহলে সেই ব্যক্তি তার নিরাপত্তার জন্য ঐ সমস্ত শহরে পালিয়ে যেতে পারে| ঐ ছয়টি শহর ছাড়াও তোমরা লেবীয়দের আরও 42টি শহর দেবে| 7 সুতরাং তোমরা মোট 48টি শহর লেবীয়দের দেবে| ঐ শহরগুলোর চারধারের জমিও তোমরা তাদের দেবে| 8 ইস্রায়েলের বড় পরিবারগুলি জমির বড় অংশ পাবে| ছোটো পরিবারগোষ্ঠীগুলি জমির ছোট অংশ পাবে| সুতরাং বড় পরিবারগোষ্ঠীগুলি বেশী শহর এবং ছোট পরিবারগোষ্ঠীগুলি কম শহর লেবীয়দের দেবে|” 9 এরপর প্রভু মোশিকে বললেন, 10 “লোকদের বল: তোমরা যর্দন নদী পার হয়ে যখন কনান দেশে প্রবেশ করবে, 11 তখন সুরক্ষার শহর হিসাবে তোমরা অবশ্যই কিছু শহর বেছে নেবে| যদি কোনো ব্যক্তি ঘটনাচক্রে অন্য কাউকে হত্যা করে, তাহলে সে তার সুরক্ষার জন্য ঐ শহরগুলোর যে কোনো একটিতে পালিয়ে যেতে পারে| 12 মৃত ব্যক্তির পরিবারের যারা প্রতিশোধ নিতে চায এমন যে কারো কাছ থেকে সে নিরাপদে থাকতে পারবে| আদালতে তার বিচার হওয়া পর্য়ন্ত সে নিরাপদে থাকবে| 13 সেখানে ছয়টি সুরক্ষার শহর থাকবে| 14 ঐ শহরগুলোর মধ্যে তিনটি শহর যর্দন নদীর পূর্ব দিকে থাকবে এবং তিন থাকবে যর্দন নদীর পশ্চিমে কনান দেশে| 15 ইস্রায়েলের নাগরিকদের জন্য এবং বিদেশী ও পর্য়টকদের জন্য ঐ শহরগুলো হবে নিরাপদ জায়গা| ঐ সমস্ত লোকদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি যদি ঘটনাচক্রে কাউকে হত্যা করে তবে সে ঐ শহরগুলোর যে কোনো একটিতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হবে| 16 “যদি কোনো ব্যক্তি লোহার অস্ত্র ব্যবহার করে কাউকে এমন আঘাত করে যে সেই ব্যক্তি মারা যায়, তবে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই মরতে হবে| 17 যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো প্রস্তরখণ্ড নেয এবং তা দিয়ে যদি সে কাউকে হত্যা করে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই মরতে হবে| (কিন্তু প্রস্তরখণ্ডটি যেন অবশ্যই সেই পরিমাপের হয় যেটিকে লোকদের হত্যা করার কাজে সাধারণভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে|) 18 যদি কোনো ব্যক্তি কাউকে হত্যা করার জন্য কোনো কাঠের টুকরো ব্যবহার করে, যা দিয়ে হত্যা করা যায়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই মরতে হবে| (কাঠের টুকরোটি যেন অবশ্যই একটি অস্ত্র হয় যেটিকে লোকরা সাধারণতঃ লোকদের হত্যা করার কাজে ব্যবহার করে|) 19 মৃত ব্যক্তির পরিবারের একজন সদস্য সেই হত্যাকারীর পেছনে তাড়া করে তাকে হত্যা করতে পারে| 20 “কোন ব্যক্তি যদি তার হাত দিয়ে কাউকে এমন আঘাত করে যে তার মৃত্যু হয় অথবা যদি সে কাউকে ধাক্কা দিয়ে হত্যা করে বা যদি কোনো কিছু ছুঁড়ে তাকে হত্যা করে এবং হত্যাকারী সেটি ঘৃণাবশতঃ করে তাহলে সে একজন খুনী| তাকে অবশ্যই হত্যা করা উচিত্| মৃত ব্যক্তির পরিবারের যে কোনো একজন সদস্য সেই হত্যাকারীর পশ্চাদ্ধাবন করে তাকে হত্যা করতে পারে| 21 22 “কিন্তু একজন ব্যক্তি দুর্ভাগ্যবশতঃ অন্য কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করতে পারে| সেই ব্যক্তি নিহত ব্যক্তিকে ঘৃণা করত না, এটি কেবলমাত্র একটি দুর্ঘটনা ছিল| অথবা, একজন ব্যক্তি কোনো কিছু ছুঁড়তে পারে এবং দুর্ঘটনাক্রমে অন্য কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করতে পারে যদিও সে কাউকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা করে নি| 23 অথবা যার দ্বারা মারা যায় এমন কোন পাথর না দেখে কারোর উপরে ফেলে এবং সেই পাথরখণ্ডটির আঘাতে যদি ব্যক্তিটি খুন হয় অথচ সেই ব্যক্তি কাউকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা করে নি| 24 যদি সে রকম হয়, তাহলে মণ্ডলীকে অবশ্যই স্থির করতে হবে কি করা উচিত্| মণ্ডলীর আদালত অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেবে যে মৃত ব্যক্তির পরিবারের কোনো সদস্য সেই ব্যক্তিকে হত্যা করতে পারে কি না| 25 মণ্ডলী যদি মৃত ব্যক্তির পরিবারের কাছ থেকে খুনীকে রক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয, তাহলে মণ্ডলী অবশ্যই তাকে তার সুরক্ষার শহরে ফিরিযে নিয়ে যাবে এবং পবিত্র তেলের দ্বারা অভিষিক্ত মহাযাজক মারা যাওয়া পর্য়ন্ত হত্যাকারী অবশ্যই সেখানে থাকবে| 26 “সেই ব্যক্তি তার শহরের সুরক্ষার সীমানার বাইরে অবশ্যই যাবে না| যদি সে সেই সীমানাগুলোর বাইরে যায়, এবং যদি মৃত ব্যক্তির পরিবারের কোনো সদস্য তাকে ধরতে পারে এবং তাকে হত্যা করে, তাহলে সেই সদস্য এই হত্যার জন্য দোষী হবে না| 27 28 যে ব্যক্তি দুর্ঘটনাক্রমে কোনো একজনকে হত্যা করেছিল, সে মহাযাজক মারা যাওয়া পর্য়ন্ত অবশ্যই তার সুরক্ষার শহরে থাকবে| মহাযাজক মারা যাওয়ার পরে সে তার নিজের জায়গায় ফিরে যেতে পারে| 29 তোমার লোকদের সমস্ত শহরে চিরকালের জন্য ঐগুলোই বিচার বিধি হবে| 30 “যদি সেখানে কযেকজন সাক্ষী থাকে তাহলেই একজন হত্যাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত্| শুধুমাত্র একজন সাক্ষী থাকলে কোনো ব্যক্তিকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না| 31 “যদি কোনো ব্যক্তি খুনী হয়, তাহলে তাকে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত্| অর্থ গ্রহণ করে তার শাস্তির কোনো প্রকার পরিবর্তন করো না| সেই খুনীকে অবশ্যই হত্যা করা উচিত্| 32 “যদি কোনো ব্যক্তি কাউকে হত্যা করে সুরক্ষার শহরের কোনো একটিতে পালিয়ে যায়, তাহলে তাকে বাড়ীতে ফিরে যেতে দেওয়ার জন্য কোনো অর্থ গ্রহণ করো না| মহাযাজক মারা যাওয়া পর্য়ন্ত সেই ব্যক্তি অবশ্যই সেই শহরে থাকবে| 33 “নিরাপরাধের রক্তে তোমার দেশের সর্বনাশ হতে দিও না| যদি কোনো ব্যক্তি কাউকে হত্যা করে, তাহলে সেই অপরাধের একমাত্র শাস্তি হল সেই খুনীর মৃত্যুদণ্ড| অন্য কোনো প্রকার শাস্তিই দেশকে সেই অপরাধ থেকে মক্ত করতে পারবে না| 34 আমি প্রভু! আমি ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে বাস করি| আমিও সেই দেশে থাকবো, সুতরাং নিরপরাধ লোকদের রক্তে এটিকে অপবিত্র করো না|”
1 মনঃশি ছিলেন য়োষেফের পুত্র| মনঃশির পুত্র ছিলেন মাখীর| মাখীরের পুত্র ছিলেন গিলিয়দ| মোশি এবং ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য গিলিয়দ পরিবারের নেতারা গিয়েছিলেন| 2 তাঁরা বললেন, “ঘুঁটি চেলে জমি নিতে প্রভু আমাদের আদেশ করেছিলেন| মহাশয়, প্রভু আমাদের আদেশ করেছিলেন যে সল্ফাদের জমি তার কন্যারাই পাবে| সল্ফাদ আমাদেরই ভাই ছিলেন| 3 হতে পারে, অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর যে কোনো একটির থেকে একজন ব্যক্তি সল্ফাদের কন্যাদের মধ্যে কোনো একজনকে বিয়ে করবে| সেই জমি কি তাহলে আমাদের পরিবারের বাইরে চলে যাবে? সেম্প অন্য পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা কি সেম্প জমি পাবে? ঘুঁটি চেলে আমরা যে জমি পেয়েছিলাম, সেটি কি আমরা হারাবো? 4 লোকরা তাদের জমি বিক্রি করতে পারে| কিন্তু জুবিলী বছরে সমস্ত জমি সেই পরিবারগোষ্ঠীর কাছে ফিরে আসে যারা প্রকৃতই সেটির মালিক| সেই সময়, সল্ফাদের কন্যাদের জমি কে পাবে? আমাদের পরিবার কি সেই জমি চিরকালের জন্য হারাবে?” 5 মোশি ইস্রায়েলের লোকদের এই আদেশ দিয়েছিলেন| এই আদেশটি ছিল প্রভুর কাছ থেকে পাওয়া| “য়োষেফের পরিবারের লোকরা যা বলছে তা ঠিক| 6 সলফাদের কন্যাদের প্রতি প্রভুর আদেশ হল এই: যদি তোমরা কোনো ব্যক্তিকে বিয়ে করতে চাও, তাহলে তোমরা অবশ্যই তোমাদের নিজেদের গোষ্ঠীর কোনো ব্যক্তিকেই বিয়ে করবে| 7 এই প্রকারেই ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে এক পরিবারগোষ্ঠী থেকে অন্য পরিবারগোষ্ঠীতে জমি হস্তান্তরিত হবে না| প্রত্যেক ইস্রায়েলীয় তার পূর্বপুরুষের অধিকারভুক্ত জমি রাখবে| 8 এবং যদি কোনো স্ত্রীলোক তার পিতার জমি পায়, তাহলে সে অবশ্যই তার নিজের গোষ্ঠীর কোনো ব্যক্তিকেই বিবাহ করবে| এই প্রকারে প্রত্যেক ব্যক্তি তার পূর্বপুরুষের অধিকারভুক্ত জমি রাখবে| 9 “সুতরাং ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে এক গোষ্ঠী থেকে অন্য পরিবারগোষ্ঠীতে জমি অবশ্যই হস্তান্তরিত হবে না| প্রত্যেক ইস্রায়েলীয় তার নিজের পূর্বপুরুষের অধিকারভুক্ত জমি রাখবে|” 10 সল্ফাদের কন্যারা মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ মান্য করেছিল| 11 সেই কারণে সলফাদের কন্যারা মহলা, তির্সা, হগ্লা, মিল্কা এবং নোয়া - পরিবারে তাদের পিতার দিকের, জ্ঞাতি ভাইদের বিবাহ করেছিল| 12 তাদের স্বামীরা ছিল মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত, সেই কারণে তাদের জমি তাদের পিতার পরিবার এবং পরিবারগোষ্ঠীর অধিকারেই ছিল| 13 সুতরাং ঐগুলোই হল আইন এবং আদেশ যা যিরীহোর অপর পারে, যর্দন নদীর পাশে মোয়াবের যর্দন উপত্যকায প্রভু মোশিকে দিয়েছিলেন|
1 মোশি ইস্রায়েলের লোকদের এই বার্তা দিয়েছিলেন| এই সময় তারা যর্দন নদীর পূর্বদিকের মরুভূমিতে যর্দন উপত্যকায ছিল| এটি ছিল সূফের অপর পারে, যার একদিকে পারণ মরুভূমি আর অন্যদিকে তোফল, লাবন, হত্সেরোত্ এবং দীষাহর শহরগুলো| 2 সেযীর পর্বতমালার মধ্য দিয়ে হোরেব (সীনয়) পর্বত থেকে কাদেশ বর্ণেয় পর্য়ন্ত য়েতে মাত্র এগারো দিন লাগে| 3 কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের মিশর ত্যাগ করার পর থেকে তাদের এই স্থানে আসা পর্য়ন্ত 40 বত্সর অতিক্রান্ত হয়েছে| 4 0তম বত্সরের একাদশ মাসের প্রথম দিনে মোশি লোকদের সঙ্গে কথা বললেন| প্রভু যা আজ্ঞা করেছিলেন, মোশি তার সমস্তটাই তাদের বললেন| 4এ হল প্রভুর সীহোন এবং ওগকে পরাজিত করার পরের ঘটনা| (সীহোন ছিলেন ইমোরীয়দের রাজা, তিনি হিষ্বোনে বাস করতেন| ওগ ছিলেন বাশনের রাজা, তিনি অষ্টারোত্ এবং ইদ্রিযীতে বাস করতেন|) 5 ইস্রায়েলের লোকরা যর্দন নদীর পূর্বদিকে মোয়াবে থাকাকালীন মোশি ঈশ্বরের আদেশগুলির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন| তিনি বললেন: 6 “হোরেব পর্বতে প্রভু, আমাদের ঈশ্বর আদেশ করে বলেছিলেন, ‘তোমরা যথেষ্ট সময় এই পর্বতে বাস করেছো| 7 ইমোরীয় লোকরা যেখানে বাস করে সেই পাহাড়ী দেশে যাও| সেখানে আশেপাশের সমস্ত জায়গাতেই যাও| যর্দন উপত্যকা, পাহাড়ী দেশ, পশ্চিমের ঢালু অঞ্চল, নেগেভ এবং সমুদ্রতীরে যাও| কনান এবং লিবানোনের মধ্য দিয়ে বৃহত্ নদী ফরাত্ পর্য়ন্ত যাও| 8 দেখো, আমি তোমাদের সেই দেশ দিচ্ছি| যাও এবং সেই দেশটি অধিকার কর| আমি শপথ করেছিলাম য়ে সেই জমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের অব্রাহাম, ইসহাক এবং যাকোবকে দেব| আমি শপথ করেছিলাম য়ে সেই জমি তাঁদের এবং তাঁদের উত্তরপুরুষদের দেবো|”‘ 9 মোশি বললেন, “সেই সময় আমি বলেছিলাম য়ে আমার একার পক্ষে তোমাদের ভার নেওয়া সম্ভব নয়| 10 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, লোকসংখ্যা আরও বৃদ্ধি করেছেন, আর তাই আজ তোমাদের সংখ্যা আকাশের অগণিত তারার মতো| 11 প্রভু, তোমাদের পূর্বপূরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের সংখ্যা এখন যা রয়েছে তার থেকে 1,000 গুণ বৃদ্ধি করুন| তিনি ঠিক য়েমন শপথ করেছিলেন, সেভাবেই তোমাদের আশীর্বাদ করুন| 12 কিন্তু আমি একা তোমাদের দায়িত্ব নিতে পারবো না এবং তোমাদের সকল সমস্যার সমাধান করতে পারবো না| 13 সেই কারণে তোমরা প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী থেকে কয়েকজন লোককে বেছে নাও, আমি তাদের তোমাদের নেতা হিসাবে মনোনীত করব| বিজ্ঞ লোকদের বেছে নাও যাদের বোধশক্তি এবং অভিজ্ঞতা আছে|’ 14 “তোমরা বলেছিলে, ‘আপনি যা বলেছেন সেটা করাই ভালো হবে|’ 15 “সুতরাং তোমাদের পরিবারগোষ্ঠী থেকে তোমাদের নির্বাচিত জ্ঞানী এবং সম্মানিত লোকদের নিয়ে আমি তাঁদের তোমাদের নেতা হবার জন্য নিযুক্ত করেছিলাম| এই প্রকারে, আমি তোমাদের 1000 জন লোকর জন্যে নেতা, 100 জন লোকর জন্য নেতা, 50 জন লোকর জন্য নেতা, 10 জন লোকর জন্য নেতার ব্যবস্থা করেছিলাম| এছাড়াও আমি তোমাদের প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর জন্য উচ্চপদাধিকারী ব্যক্তি নিয়োগ করেছিলাম| 16 “সেই সময়, আমি ঐ সকল বিচারকদের বলেছিলাম, ‘নিজের লোকদের মধ্যে য়ে সব যুক্তিতর্কের আদান প্রদান হবে সেগুলো ভালো করে শুনো| প্রত্যেকটি ঘটনা বিচার করার সময় নিরপেক্ষ হবে| সমস্যাটি দুজন ইস্রায়েলীয় লোকর মধ্যেই হোক অথবা একজন ইস্রায়েলীয় এবং একজন বিদেশীর মধ্যেই হোক, তাতে অবস্থার কোনো প্রভেদ হবে না| তোমরা অবশ্যই প্রত্যেকটি ঘটনা নিরপেক্ষভাবে বিচার করবে| 17 বিচার করার সময় কখনই একজন ব্যক্তিকে অন্যের থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে না| প্রত্যেক ব্যক্তির সমান বিচার করবে| কোনো ব্যক্তির সম্পর্কেই ভীত হবে না, কারণ তোমাদের সিদ্ধান্ত ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা সিদ্ধান্ত| কিন্তু যদি কোনো ঘটনা বিচার করা তোমাদের পক্ষে খুবই কঠিন হয়, তাহলে সেটি আমার কাছে নিয়ে এসো; এবং আমি সেটির বিচার করবো|’ 18 সেই একই সময়, আমি তোমাদের অবশ্য করণীয অন্যান্য কর্তব্য সম্পর্কেও বলেছিলাম| 19 “তখন আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে মান্য করেছিলাম| আমরা হোরেব পর্বত ত্যাগ করেছিলাম এবং ইমোরীয় লোকদের পার্বত্যদেশ অভিমুখে যাত্রা করেছিলাম| তোমরা য়ে বড় এবং সাংঘাতিক একটি মরুভূমি দেখেছিলে, তার মধ্য দিয়েই আমরা কাদেশ-বর্ণেযে এসেছিলাম| 20 তখন আমি তোমাদের বলেছিলাম, ‘তোমরা এখন ইমোরীয়দের পার্বত্য দেশে এসেছো| প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, আমাদের এই দেশ প্রদান করবেন| 21 দেখো, ওটি ওখানেই আছে| ওপরে যাও এবং নিজেদের জন্য তোমরা ঐ দেশটিকে অধিকার করো! প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের এটি করতে বলেছিলেন; সুতরাং ভয় পেও না, কোনো কিছুর সম্পর্কেই উদ্বিগ্ন হয়ো না!’ 22 “কিন্তু তোমরা সকলে আমার কাছে এসে বলেছিলে, ‘প্রথমে দেশটিকে অনুসন্ধান করে দেখার জন্য কিছু লোককে আমরা পাঠাই| এরপর তারা ফিরে এসে আমাদের কোন্ পথে রওনা দিতে হবে এবং কোন্ কোন্ শহরে য়েতে হবে তার সন্ধান দেবে|’ 23 “আমার এই প্রস্তাব ভাল লেগেছিল| সেই কারণে আমি তোমাদের প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী থেকে একজন করে মোট বারোজন লোককে বেছে নিয়েছিলাম| 24 এরপর তারা সেই জায়গা ত্যাগ করে পার্বত্য দেশের ওপরে উঠেছিল এবং তাঁরা ইষ্কোল উপত্যকায এসে এটির অনুসন্ধান করেছিল| 25 তারা সেই দেশ থেকে কিছু ফল সংগ্রহ করে সেগুলো নিয়ে আমাদের কাছে ফিরে এসে এই সংবাদ দিয়ে বলল, ‘প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, য়ে দেশ দিচ্ছেন, সে উত্তম দেশ!’ 26 “কিন্তু তোমরা সেই দেশের অভ্যন্তরে য়েতে অস্বীকার করেছিলে| তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের আজ্ঞার বিরুদ্ধাচারণ করেছিলে| 27 তোমরা তোমাদের তাঁবুতে অভিযোগ করে বলেছিলে, ‘প্রভু আমাদের ঘৃণা করেন! তিনি আমাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন যাতে ইমোরীয়রা আমাদের ধ্বংস করতে পারে! 28 আমরা এখন কোথায় য়েতে পারি? আমাদের ভাইরা (বারোজন চর) তাদের তথ্যের দ্বারা আমাদের ভীত করেছে| তারা বলেছিল: সেখানকার অধিবাসীরা আমাদের তুলনায় অনেক বড় এবং লম্বা| শহরগুলো বড় এবং তাদের প্রাচীরগুলো আকাশের সমান উঁচু এবং আমরা সেখানে দৈত্যাকার লোকও দেখেছিলাম!’ 29 “তখন আমি তোমাদের বলেছিলাম, ‘তোমরা মনঃক্ষুন্ন হয়ো না! ঐ সকল লোকদের সম্পর্কে ভীত হয়ো না! 30 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের আগে আগে যাবেন এবং তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করবেন| মিশরে তোমাদের চোখের সামনে তিনি যা করেছিলেন, এখানেও তিনি সেই একই কাজ করবেন| 31 তোমরা সেখানে এবং মরুভূমিতে তাঁকে তোমাদের সম্মুখে য়েতে দেখেছিলে| তোমরা দেখেছিলে য়েভাবে একজন পিতা তার পুত্রকে বহন করে নিয়ে যায়, ঠিক সেভাবে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের বহন করেছিলেন| এই স্থানে পৌঁছানো পর্য়ন্ত সমস্ত রাস্তাই প্রভু তোমাদের নিরাপদে নিয়ে এসেছিলেন|’ 32 “কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের ওপরে আস্থা রাখতে পারো নি! 33 অথচ তোমাদের ভ্রমণের সময় তোমাদের শিবির স্থাপনের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে বের করার জন্য তিনিই তোমাদের আগে গিয়েছিলেন| য়ে রাস্তা দিয়ে তোমাদের যাওয়া উচিত্ সেটি প্রদর্শনের জন্য তিনিই রাত্রে আগুনের মধ্য দিয়ে এবং দিনের বেলায় মেঘের মধ্য দিয়ে তোমাদের সামনে গিয়েছিলেন| 34 “তোমাদের অভিযোগ প্রভু শুনেছিলেন এবং তিনি এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন| তিনি এক কঠিন প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলেন, 35 “তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে আমি য়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, সেই উত্তম দেশে তোমরা মন্দ লোকরা যারা এখন বেঁচে আছো, তারা কেউই প্রবেশ করবে না| 36 কেবলমাত্র যিফন্নির পুত্র কালেব সেই দেশ দেখতে পাবে| কালেব য়ে জায়গা দিয়ে হেঁটে গিয়েছিল সেই জায়গা আমি তাকে এবং তার উত্তরপুরুষদের দেবো| কারণ, আমার নির্দেশমতো কালেব সব কাজ করেছিলো|’ 37 “তোমাদের জন্য প্রভু আমার ওপরও ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘মোশি তুমিও এই দেশে প্রবেশ করতে পারবে না| 38 কিন্তু তোমার সহায়ক, নূনের পুত্র যিহোশূয় ঐ দেশে প্রবেশ করতে পারবে| যিহোশূয়কে উত্সাহিত করো, কারণ দেশটিকে অধিকার করার জন্য সেই ইস্রায়েলের লোকদের নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে|’ 39 “এবং প্রভু আমাদের বলেছিলেন, ‘তোমরা বলেছিলে, তোমাদের সন্তানরা তোমাদের শত্রুদের দ্বারা অপহৃত হবে; কিন্তু ঐ সন্তানরা ঐ দেশে প্রবেশ করবে| তোমাদের ভুলের জন্য আমি তোমাদের সন্তানদের দোষারোপ করি না, কারণ কোনটা ঠিক এবং কোনটা ভুল সেটা বোঝার পক্ষে তারা এখনও অনেক শিশু| সেই কারণে আমি তাদের ঐ দেশ দেব এবং তারা তা অধিকার করবে| 40 কিন্তু তোমরা সূফ সাগরে যাওয়ার রাস্তা ধরে মরুভূমিতে ফিরে যাও|” 41 “তখন তোমরা বলেছিলে, ‘মোশি, আমরা প্রভুর বিরুদ্ধাচারণ করে পাপ করেছি; কিন্তু এখন আমরা যাব এবং যুদ্ধ করবো, ঠিক য়েমনটি আমাদের প্রভু ঈশ্বর, আমাদের আগে আজ্ঞা করেছিলেন|’ তখন তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের অস্ত্র তুলে নিয়েছিলে| ভেবেছিলে য়ে, সেই পার্বত্য দেশে গিয়ে সেটিকে অধিগ্রহণ করা খুবই সহজ কাজ হবে| 42 “কিন্তু প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘লোকদের ওপরে য়েতে এবং সেখানে গিয়ে যুদ্ধ করতে বারণ করো, কারণ আমি তাদের সঙ্গে থাকবো না এবং তারা তাদের শত্রুদের কাছে পরাজিত হবে!’ 43 “আমি তোমাদের সেই কথা বললাম, কিন্তু তোমরা শোন নি| তোমরা প্রভুর আজ্ঞা পালন করতে অস্বীকার করেছিলে| তোমরা য়োগ্য না হয়ে সেই কাজে হাত দিয়েছিলে এবং ওপরের পার্বত্য দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিলে| 44 কিন্তু সেখানে বসবাসকারী ইমোরীয় লোকরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে এসেছিল| তারা তোমাদের পেছনে তাড়া করা এক ঝাঁক মৌমাছির মতো ছিল| সেযীর থেকে হর্মা পর্য়ন্ত সমস্ত রাস্তা তোমাদের তাড়া করেছিল| 45 তখন তোমরা ফিরে এসেছিলে এবং প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদেছিলে| কিন্তু প্রভু তোমাদের কান্নায মন দিলেন না, তোমাদের কোনো কথা শুনলেন না| 46 আর তোমরা কাদেশে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছিলে|
1 “তারপর প্রভু আমাকে যা করতে বলেছিলেন, সেই অনুসারে আমরা সূফ সাগরে যাওয়ার রাস্তা দিয়ে মরুভূমিতে ফিরে গিয়েছিলাম| সেযীর পর্বতমালাকে চক্রাকারে বেষ্টন করে আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ করেছিলাম| 2 তখন প্রভু আমাকে বলেছিলেন, 3 ‘এই পর্বতমালাকে ঘিরে তোমরা বহুদিন ধরে ভ্রমণ করেছ| উত্তর দিকে ঘুরে যাও| 4 লোকদের এই কথাগুলো বল: তোমরা সেযীর দেশের মধ্য দিয়ে যাবে| এই দেশটি তোমাদের আত্মীয এষৌ এর উত্তরপুরুষের| তারা তোমাদের ভয় পাবে| তাই তোমরা সাবধান হবে| 5 তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো না| তাদের দেশের কোনো অংশই আমি তোমাদের দেবো না - এমন কি এর এক ফুট পরিমাণও নয়| কারণ আমি এষৌকে সেযীরের পার্বত্য প্রদেশটি তার নিজের দেশ হিসাবে দিয়েছি| 6 তোমরা তাদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে খাবার কিনে খাবে এবং জল কিনে পান করবে| 7 মনে রাখবে য়ে তোমরা যা করেছো তার প্রত্যেকটি কাজে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের আশীর্বাদ করেছেন| এই বৃহত্ মরুভূমির মধ্য দিয়ে তোমাদের হাঁটার খবর তিনি জানেন| এই 40 বছর ধরে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে আছেন| তাই তোমাদের কোন কিছুরই অভাব হয় নি|’ 8 “সেই কারণে আমরা সেযীরে বসবাসকারী এষৌ এর লোকদের অর্থাত্ আমাদের আত্মীযদের সামনে দিয়ে চলে গেলাম| যর্দন উপত্যকা থেকে এলত্ এবং ইত্সিযোন গেবরের শহরে যাওয়ার রাস্তা ত্যাগ করে আমরা মোয়াবের মরুভূমিতে যাওয়ার রাস্তার দিকে ঘুরেছিলাম| 9 “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘মোয়াবে লোকদের কষ্ট দিও না, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করো না, তাদের দেশের কোনো অংশই আমি তোমাদের দেবো না| তারা লোটের উত্তরপুরুষ এবং আমিই তাদের আর্ শহর দান করেছিলাম|”‘ ( 10 অতীতে, আর্-এ এমীয় লোকরা বাস করতো| তারা খুব শক্তিশালী ছিল এবং সেখানা তাদের সংখ্যাও ছিল প্রচুর| অনাকীয় লোকদের মতো তারা উচ্চতায় ছিল বেশ লম্বা| 11 অনাকীয় ছিল রফাযীয় লোকদেরই অংশ বিশেষ| লোকরা ভেবেছিল য়ে এমীয়রাও রফাযীয়; কিন্তু মোয়াবে লোকরা তাদের এমীয় বলত| 12 আগে সেযীরে হোরীয লোকরাও থাকত, কিন্তু এষৌ এর লোকরা হোরীযদের তাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তাদের ধ্বংস করে দেশেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিল| ইস্রায়েলের লোকরাও ঠিক এই রকমটাই করেছিল, প্রভু তাদের য়ে দেশ দিয়েছিলেন সেই দেশের লোকদের প্রতি এই একই কাজ করেছিল|) 13 “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘এখন তোমরা সেরদ উপত্যকার অপর পাশে যাও|’ সেই কারণে আমরা সেরদ উপত্যকা পার করেছিলাম| 14 কাদেশ বর্ণেয় ত্যাগের পর থেকে সেরদ উপত্যকা অতিক্রম করা পর্য়ন্ত মাঝখানে 38 বছরের ব্যবধান ছিল| এই সময়ের মধ্যে আমাদের শিবিরের সব পুরুষ য়োদ্ধারাই মারা গিয়েছিল| প্রভু তেমনই শপথ করেছিলেন| 15 শিবিরের মধ্যে তাদের সকলের মৃত্যু না হওয়া পর্য়ন্ত প্রভু তাদের বিরুদ্ধে ছিলেন| 16 “আমাদের সমস্ত য়োদ্ধারা মারা যাওয়ার পর, 17 প্রভু আমাকে এই কথা বলেছিলেন, 18 “আজ তোমরা অবশ্যই আর্-এ সীমান্ত পার করবে এবং মোয়াবে প্রবেশ করবে| 19 তোমরা অম্মোনীয়দের কাছে উপস্থিত হয়ে তাদের বিরক্ত করবে না| তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো না, কারণ আমি তাদের দেশ তোমাদের দান করবো না| কারণ তারা লোটের উত্তরপুরুষ এবং আমিই তাদের ঐ দেশ দিয়েছি|”‘ 20 (সেই দেশ রফায়ীয়র দেশ বলেও পরিচিত| অতীতে রফায়ীয় লোকরা সেখানে বাস করতো| অম্মোনের লোকরা তাদের সম্সুম্মীয বলে ডাকত| 21 সেখানে বহু সম্সুম্মীয ছিল এবং তারা ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী| অনাকীয় লোকদের মতো তারা উচ্চতায় লম্বা ছিল| কিন্তু সম্সুম্মীযদের ধ্বংস করতে প্রভু অম্মোন লোকদের সাহায্য করেছিলেন| অম্মোন লোকরা সেই দেশ অধিগ্রহণ করে সেখানেই বাস করছে| 22 এষৌ এর লোকদের জন্য ঈশ্বর এই একই কাজ করেছিলেন| অতীতে হোরীয লোকরা সেযীরে (ইদোম) বাস করত; কিন্তু এষৌ এর লোকরা হোরীযদের ধ্বংস করে আজ পর্য়ন্ত এষৌর উত্তরপুরুষ সেখানেই বাস করছে| 23 কপ্তোরীযএর কিছু সংখ্যক লোকের জন্যও ঈশ্বর এই একই কাজ করেছিলেন| ঘসার চতুর্দিকের শহরে অব্বীয লোকরা বাস করত| কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক কপ্তোরীয থেকে এসে অব্বীযদের ধ্বংস করেছিল| ক্রিট্ থেক আগত ঐ সকল লোকরা সেই দেশ অধিগ্রহণ করে সেখানেই বাস করল|) 24 “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘অর্ণোন উপত্যকা অতিক্রম করে যাওয়ার জন্য তৈরী হও| হিষ্বোনে ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে পরাজিত করতে আমি তোমাদের সাহায্য করবো| তার দেশ অধিগ্রহণ করতে আমি তোমাদের সাহায্য করবো| সুতরাং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হও এবং তার দেশ অধিগ্রহণ করো| 25 আজ আমি সমস্ত জায়গার সকল লোকের মধ্যে তোমাদের সম্পর্কে ভীতির সঞ্চার করবো| তারা তোমাদের খবর জেনে ভয়ে আতঙ্কিত এবং কম্পিত হবে|’ 26 “কদেমোত্-এর মরুভূমিতে থাকাকালীন আমি হিষ্বোনের রাজা সীহোনের কাছে কয়েকজন দূত পাঠিয়েছিলাম| দূতেরা সীহোনকে শান্তির প্রস্তাব দিয়ে বলেছিল, 27 “আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের য়েতে দিন| আমরা রাস্তায়ই থাকবো| আমরা রাস্তার ডানদিক অথবা বামদিক কোনো দিকেই ঘুরব না| 28 আমরা আপনাদের কাছ থেকে খাবার ও জল রূপো দিয়ে কিনে খাব| আমরা শুধুমাত্র আপনার দেশের মধ্য দিয়ে পদব্রজে ভ্রমণ করতে চাই| 29 প্রভু আমাদের ঈশ্বর য়ে দেশ দিচ্ছেন, যর্দন নদী অতিক্রম করে সেই দেশে পৌঁছানো পর্য়ন্ত আমাদের আপনার দেশের মধ্য দিয়ে য়েতে দিন| সেযীরে বসবাসকারী এষৌয লোকরা এবং আর্-এ বসবাসকারী মোয়াবীয় লোকরা তাদের দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের য়েতে দিয়েছেন|’ 30 “কিন্তু সীহোন, হিষ্বোনের রাজা, আমাদের তার দেশের মধ্য দিয়ে য়েতে দেননি| কারণ প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তার মন কঠিন ও একগুঁযে করলেন য়েন তিনি তাকে তোমাদের হাতে সমর্পণ করেন, য়েমন আজ পর্য়ন্ত রয়েছে! 31 “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি রাজা সীহোন এবং তার দেশ তোমাদের দিচ্ছি| এখন যাও তার দেশ অধিগ্রহণ করো!’ 32 “এরপর য়হস নামক স্থানে রাজা সীহোন এবং তার সমস্ত লোকরা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে এসেছিল| 33 কিন্তু প্রভু আমাদের ঈশ্বর সীহোনকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন| আমরা রাজা সীহোন, তার পুত্রদের এবং তার সমস্ত লোকদের পরাজিত করেছিলাম| 34 সেই সময় রাজা সীহোনের সব শহরগুলোই আমরা অধিকার করেছিলাম| প্রত্যেক শহরের সমস্ত লোকদের, সকল পুরুষদের, স্ত্রীলোকদের এবং ছোট ছোট শিশুদের আমরা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম| আমরা কাউকেই জীবিত ছেড়ে দিই নি! 35 ঐ সমস্ত শহরগুলো থেকে আমরা কেবলমাত্র গবাদিপশু এবং মূল্য়বান দ্রব্যসামগ্রী নিয়েছিলাম| 36 অর্ণোন উপত্যকার ধারের অরোযের নামে একটি শহরকে এবং ঐ উপত্যকার মাঝখানের আরেকটি শহরকে আমরা পরাজিত করেছিলাম| অর্ণোন উপত্যকা এবং গিলিয়দের মাঝখানের সমস্ত শহরগুলোকে পরাজিত করতে প্রভু আমাদের সাহায্য করেছিলেন| আমাদের কাছে কোনো শহরই খুব শক্তিশালী ছিল না| 37 কিন্তু অম্মোনের লোকদের অধিকারভুক্ত দেশের কাছে তোমরা যাও নি| য়ব্বোক নদীর উপকূলে অথবা পার্বত্য অঞ্চলের শহরগুলোর কাছেও তোমরা যাও নি| তোমরা সেই সমস্ত স্থানে যাও নি যেখানে য়েতে প্রভু আমাদের নিষেধ করেছিলেন|
1 “আমরা ফিরেছিলাম এবং বাশনের রাস্তা ধরে গিয়েছিলাম| ইদ্রিযীতে বাশনের রাজা ওগ এবং তার সমস্ত লোকরা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে এসেছিল| 2 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘ওগ সম্পর্কে ভীত হয়ো না| আমি স্থির করেছি য়ে তাকে আমি তোমাদের কাছে সমর্পণ করব| তার সমস্ত লোকদের এবং তার দেশ আমি তোমাদের দেব| হিষ্বোনে যিনি শাসনকার্য় চালাতেন সেই ইমোরীয় রাজা সীহোনকে তোমরা য়েভাবে পরাজিত করেছিলে, ঠিক সেই ভাবেই তোমরা একেও পরাজিত করবে|’ 3 “সেই কারণে প্রভু আমাদের ঈশ্বর বাশনের রাজা ওগকে পরাজিত করতে সাহায্য করেছিলেন| আমরা তাকে এবং তার সমস্ত লোকদের পরাজিত করেছিলাম| তাদের আর কেউই বাকী ছিল না| 4 সেই সময় ওগের অধিকারে য়ে সমস্ত শহর ছিল তার সবগুলোই আমরা অধিকার করেছিলাম| ওগের লোকদের কাছ থেকে আমরা সব শহরগুলোই অধিকার করেছিলাম| এর মধ্যে ছিল বাশনের রাজা ওগের রাজ্য়, অর্গোব নামক অঞ্চলের 60 টি শহর| 5 এই সমস্ত শহরগুলো খুবই শক্তিশালী ছিল| তাদের দেওয়ালগুলি উঁচু, দরজা এবং দরজার ওপরে খিল ছিল খুব শক্ত| সেখানে আরও বহু এমন শহর ছিল য়েগুলোর কোনো প্রাচীর ছিল না| 6 হিষ্বোনের রাজা সীহোনের শহরগুলিকে আমরা য়েভাবে ধ্বংস করেছিলাম, সেভাবেই এদেরও ধ্বংস করেছিলাম| প্রত্যেকটি শহরকে এবং সেখানে বসবাসকারী সমস্ত লোকদের এমনকি সমস্ত স্ত্রীলোকদের এবং শিশুদের আমরা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছিলাম| 7 কিন্তু ঐ সমস্ত শহরের সমস্ত গোরু এবং সমস্ত মূল্য়বান দ্রব্যসামগ্রী আমরা নিজেদের জন্য রেখে দিয়েছিলাম| 8 “সেই প্রকারে, আমরা দুজন ইমোরীয় রাজার কাছ থেকে তাদের দেশ অধিগ্রহণ করেছিলাম| যর্দন নদীর পূর্বদিকে অর্ণোন উপত্যকা থেকে মাউন্ট হর্মোণ পর্বত পর্য়ন্ত দেশ আমরা অধিগ্রহণ করেছিলাম| 9 (সীদোনের লোকরা হর্মোণ পর্বতকে বলে সিরিযোন, কিন্তু ইমোরীয়রা এটিকে বলতো সনীর|) 10 উঁচু সমতলভূমির সমস্ত শহরগুলোকে এবং গিলিয়দ অধিগ্রহণ করেছিলাম| বাশনের সমস্ত অঞ্চল, সল্খা এবং ইদ্রিযী পর্য়ন্ত সমস্ত আমরা অধিকার করেছিলাম| সল্খা এবং ইদ্রিযী বাশনের রাজা ওগ-এর রাজ্য়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল|”( 11 অবশিষ্ট রফাযীয়দের মধ্যে কেবলমাত্র বাশনের রাজা ওগ ছিলেন| ওগ-এর খাট ছিল লোহা দিয়ে তৈরী| এটি 13 ফুটেরও বেশী লম্বা এবং 6 ফুট চওড়া ছিল| খাটটি এখনও রব্বা শহরে আছে, যেখানে অম্মোন লোকরা বাস করে|) 12 “সেই কারণে আমরা সেই দেশ আমাদের জন্য অধিকার করেছিলাম| রূবেণ এবং গাদের পরিবারগোষ্ঠীদের আমি এই দেশের অংশ বিশেষ দান করেছিলাম| অর্ণোন উপত্যকার আরোযার নামক জায়গা থেকে গিলিয়দের পার্বত্য দেশ পর্য়ন্ত সমস্ত দেশ এবং এর অন্তর্গত সমস্ত শহর আমি তাদের প্রদান করেছিলাম| গিলিয়দের পার্বত্য দেশের অর্ধেক তারা পেয়েছিল| 13 মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকাংশকে আমি গিলিয়দের অপর অর্ধেক এবং বাশনের সম্পূর্ণ অঞ্চল প্রদান করেছিলাম|”(বাশন ছিল ওগের রাজ্য| বাশনের কিছু অংশকে বলা হতো অর্গোব| এটিকে রফাযীয় দেশও বলা হতো| মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর যাযীর, অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল অধিগ্রহণ করেছিলেন| গশূরীয লোকদের এবং মাখাথীয লোকদের সীমানা পর্য়ন্ত সেই অঞ্চল বিস্তৃত ছিল| সেই অঞ্চলটি যাযীর নামে অভিহিত হয়েছিল| সেই কারণে আজও লোকরা বাশনকে যাযীরের শহর বলে|) 14 15 “আমি মাখীরকে গিলিয়দ প্রদান করেছিলাম| 16 এবং রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীকে এবং গাদ-এর পরিবারগোষ্ঠীকে আমি সেই দেশ প্রদান করেছিলাম, য়েটি গিলিয়দে শুরু হয়েছে| এই দেশটি অর্ণোন উপত্যকা থেকে য়ব্বোক নদী পর্য়ন্ত বিস্তৃত| উপত্যকাটির মধ্যাঞ্চল হল একটি সীমানা| য়ব্বোক নদীটি হল অম্মোনীয় লোকদের সীমানা| 17 মরুভূমির কাছের যর্দন নদী ছিল তাদের পশ্চিম সীমানা| এই অঞ্চলের উত্তরে গালিল হ্রদ এবং দক্ষিণে রয়েছে মৃতের সমুদ্র (লবণ সমুদ্র)| এটি পূর্বদিকের পিস্গার পাহাড়গুলির নীচে অবস্থিত| 18 “সেই সময়, আমি তোমাদের এই আদেশ দিয়েছিলাম; ‘প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের যর্দন নদীর পূর্বদিকের্ দেশ বাস করার জন্য দিয়েছেন| কিন্তু এখন তোমাদের য়োদ্ধারা অবশ্যই তাদের অস্ত্র তুলে নেবে এবং অন্যান্য ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীকে নদী অতিক্রম করার কাজে নেতৃত্ব দেবে| 19 তোমাদের স্ত্রীরা, তোমাদের সন্তানরা এবং তোমাদের সমস্ত গবাদিপশু (আমি জানি তোমাদের অনেক গবাদিপশু আছে) অবশ্যই এই শহরগুলিতে থাকবে, য়েটা আমি তোমাদের দিয়েছি| 20 কিন্তু তোমরা অবশ্যই তোমাদের ইস্রায়েলীয় আত্মীযবর্গকে সাহায্য করবে, যতক্ষণ পর্য়ন্ত না তারা যর্দন নদীর অপর পারে তাদের প্রভুর দেওয়া দেশ অধিগ্রহণ করে| প্রভু তাদের সেখানে শাস্তি দেওয়া পর্য়ন্ত তাদের সাহায্য করো, ঠিক য়েমন তিনি এখানে তোমাদের জন্য করেছিলেন| এরপর আমি তোমাদের য়ে দেশ দিয়েছি সেখানে ফিরে আসতে পার|’ 21 “তখন আমি যিহোশূয়কে বলেছিলাম, ‘প্রভু তোমাদের ঈশ্বর এই দুজন রাজার কি দশা করেছেন সেটা তুমি স্বচক্ষে দেখেছ| তুমি য়ে রাজ্য়েই প্রবেশ করবে, সেখানেই ঈশ্বর এই একই কাজ করবেন| 22 এই সকল দেশের রাজাদের ভয় পেও না, কারণ প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের জন্য যুদ্ধ করবেন|’ 23 “এরপর আমার বিশেষ কিছু করার জন্য আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম| আমি বলেছিলাম, 24 ‘প্রভু আমার মনিব, আমি তোমার সেবক| আমি জানি য়ে তুমি তোমার চমত্কারিত্বের এবং শক্তির সামান্য অংশই আমাকে দেখিয়েছ| তুমি য়ে মহত্ এবং শক্তি সম্পন্ন কাজ করেছ, তেমন কাজ করতে পারে এমন কোনো ঈশ্বর স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে নেই| 25 কৃপা করে আমাকে যর্দন নদী পার হতে এবং সেই উত্তম দেশ প্রত্যক্ষ করতে দাও| আমাকে সুন্দর পার্বত্য দেশ এবং লিবানোন দর্শন করতে দাও|’ 26 “কিন্তু তোমাদের জন্য প্রভু আমার ওপরে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন| তিনি আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিলেন| প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘এটাই যথেষ্ট! এই প্রসঙ্গে আর কোনো কথা বোলো না| 27 পিস্গা পর্বতের সর্বোচ্চ শিখরে যাও| এর পশ্চিম দিক, উত্তর দিক, দক্ষিণ দিক এবং পূর্ব দিক প্রত্যক্ষ কর| তুমি এই সব চোখে দেখতে পাবে, কিন্তু কখনই যর্দন নদী অতিক্রম করতে পারবে না| 28 তুমি অবশ্যই যিহোশূয়কে নির্দেশ দেবে| তুমি অবশ্যই তাকে উত্সাহিত করবে এবং তাকে সবল করবে| কারণ যর্দন নদী অতিক্রম করার কাজে যিহোশূয় লোকদের নেতৃত্ব দেবে| তুমি কেবল দেশটি দেখতে পাবে, কিন্তু যিহোশূয় তাদের ঐ দেশে নিয়ে যাবে| সে তাদের ঐ দেশটির অধিগ্রহণে এবং সেখানে বাস করতে সাহায্য করবে|’ 29 “সেই কারণে, বৈত্-পিযোরের অপর দিকের উপত্যকাতেই আমরা থেকেছিলাম|”
1 “হে ইস্রায়েলীয়রা, আমি তোমাদের য়ে বিধি এবং আদেশ শেখাব সেগুলো খুব মন দিয়ে শোন| সেগুলো মান্য করলে তোমরা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে| তাহলেই প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন, সেই দেশে তোমরা প্রবেশ করতে পারবে এবং সেই দেশ অধিকার করতে পারবে| 2 আমি তোমাদের য়ে আদেশ দিয়েছি তার সঙ্গে তোমরা কোন কিছু য়োগ কোর না এবং তার থেকে কোনো কিছু বাদ দিও না| তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের আদেশ মান্য করবে, যা আমি তোমাদের দিয়েছি| 3 “তোমরা দেখেছ, প্রভু বাল পিযোরে কি করেছিলেন| সেই স্থানে তোমাদের য়ে সব লোকরা বালের মূর্ত্তির অনুগামী হয়েছিল, তাদের সকলকে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর ধ্বংস করেছিলেন| 4 কিন্তু তোমরা সকলে যারা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের অনুগামী হয়েই থেকেছিলে, তারা আজও বেঁচে আছ| 5 “প্রভু আমার ঈশ্বর আমাকে য়ে আজ্ঞা দিয়েছিলেন, সেই বিধি এবং শাসন সম্পর্কে আমি তোমাদের শিখিযেছিলাম| এই বিধিগুলো আমি এই কারণে শিখিযেছিলাম যাতে তোমরা য়ে দেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছ এবং নিজেদের জন্য অধিগ্রহণ করছ, সেখানে এই গুলো মেনে চলতে পার| 6 খুব সতর্কভাবে এই বিধিগুলোকে মেনে চলবে| এর থেকে অন্য গোষ্ঠীর লোকরা বুঝতে পারবে তোমরা কতটা জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমান| এই সকল বিধি সম্পর্কে জানতে পেরে তারা বলবে, ‘সত্য়ি এই জাতির (ইস্রায়েল) লোকরা জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমান|” 7 “কারণ এমন কোন্ মহান জাতি রয়েছে যাদের ঈশ্বর নিকটেই থাকেন এবং আমাদের প্রভু ঈশ্বরের মত ডাকলেই কাছে আসেন? 8 আজ আমি তোমাদের য়ে শিক্ষামালা দিচ্ছি, সেরকম ভাল ও ন্যায় বিধি ও নিয়মাবলী কোন জাতির আছে? 9 কিন্তু সাবধান, নিজের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রেখো পাছে তোমরা যা দেখেছ তার কোনো কিছুই ভুলে যাও এবং পাছে তা তোমাদের জীবনকালে মন থেকে মুছে যায়| তোমরা অবশ্যই তোমাদের সন্তানদের এবং নাতি-নাতনীদের ঐগুলো শিক্ষা দেবে| 10 মনে করো সে দিনের কথা, য়েদিন হোরেব পর্বতে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়িয়েছিলে| প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি যা বলি, সেগুলো শোনার জন্য সমস্ত লোকদের এক জায়গায় জড়ো করো| তখন তারা যতদিন এই পৃথিবীতে বাঁচবে ততদিন আমাকে সম্মান করতে শিখবে এবং তারা তাদের সন্তানদের এগুলো শেখাবে|’ 11 তোমরা কাছে এসেছিলে এবং পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়েছিলে| পাহাড়টি আগুনে জ্বলছিল আর সেই আগুন আকাশ পর্য়ন্ত প্রসারিত হয়েছিল| সেখানে ঘন কালো মেঘ এবং ঘন অন্ধকার ছিল| 12 তখন প্রভু আগুনের মধ্যে থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন| তোমরা কথা বলার রব শুনেছিলে, কিন্তু তোমরা কোনো প্রকার আকৃতি দেখতে পাও নি| কেবল গলার রব শোনা যাচ্ছিল| 13 প্রভু তাঁর চুক্তির কথা তোমাদের বলেছিলেন এবং দশটি আজ্ঞা দিয়ে তোমাদের সেগুলো মেনে চলতে বলেছিলেন| সেই বিধিগুলো প্রভু দুটি পাথরের ফলকের ওপরে লিখেছিলেন| 14 সেই সময় তোমরা য়ে দেশে প্রবেশ করতে এবং অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছ, সেখানে মেনে চলার জন্য বিধি এবং নিয়ম সম্পর্কেও তোমাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রভু আমাকে আদেশ করেছিলেন| 15 “হোরেব পর্বতে আগুনের মধ্য থেকে য়েদিন প্রভু তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, সেদিন তোমরা তাঁকে দেখতে পাও নি| সেখানে ঈশ্বরের কোনো আকৃতি ছিল না| 16 সুতরাং খুব সাবধান! জীবিত কোনো কিছুর আকৃতিতে মূর্ত্তি অথবা খোদাই করা প্রতিমা তৈরী করে তোমরা পাপ করো না এবং নিজেদের ধ্বংস করো না| একজন পুরুষ অথবা একজন স্ত্রীলোকের মতো দেখতে কোনো প্রতিমূর্ত্তি তৈরী করো না| 17 পৃথিবীর কোনো পশুর মতো অথবা আকাশে ওড়ে এমন কোনো পাখির মতো দেখতে কোনো প্রতিমূর্ত্তি তৈরী করো না| 18 মাটির বুকে ভর দিয়ে চলে এমন কোনো কিছুর মতো অথবা সমুদ্রের কোনো মাছের মতো প্রতিমূর্ত্তি তৈরী করো না| 19 তোমরা আকাশের দিকে তাকিযে সূর্য়, চন্দ্র, তারা এবং আকাশের সমস্ত বাহিনী দেখতে পেলে সতর্ক থাকবে| খুব সাবধান, ঐ সকল দ্রব্যসামগ্রীর পূজা ও সেবা করার জন্য তোমরা য়েন প্রলুব্ধ না হও| প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, পৃথিবীর অন্যান্য লোকদের এই জিনিসগুলি পূজা করতে দিয়েছেন| 20 কিন্তু প্রভু তোমাদের লোহা গলানোর গরম চুল্লী সেই মিশর থেকে বের করে এনে তাঁর নিজের বিশেষ লোক হিসেবে মনোনীত করেছিলেন| য়েমন আজ তোমরা রযেছ! 21 “প্রভু তোমাদের কারণে আমার ওপরে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এবং প্রতিজ্ঞা করেছিলেন য়ে আমাকে যর্দন নদী অতিক্রম করে য়েতে দেবেন না| তিনি আমাকে বলেছিলেন য়ে আমি সেই উত্তম দেশে প্রবেশ করতে পারবো না য়েটা প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের দিতে যাচ্ছেন| 22 সুতরাং আমি এখানে এই দেশে অবশ্যই মারা যাব| আমি যর্দন নদী অতিক্রম করব না, কিন্তু তোমরা শীঘ্রই যর্দন নদীর অপর পারে যাবে এবং সেই উত্তম দেশ অধিগ্রহণ করে সেখানে বাস করবে| 23 সেই নতুন দেশে, তোমরা খুবই সতর্ক থাকবে য়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছিলেন সেটি তোমরা ভুলবে না| তোমরা অবশ্যই প্রভুর আজ্ঞা মান্য করবে| প্রভুর নিষেধ মত কোনো আকারের কোনো মূর্ত্তি তৈরী করবে না| 24 কারণ প্রভু তোমাদের ঈশ্বর গ্রাসকারী আগুনের মতো, তিনি নিজের গৌরব রক্ষা করতে উদ্য়োগী! 25 “তোমরা দীর্ঘ সময় দেশে বাস করবে| সেখানে যখন তোমাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনী হবে এবং তোমরা সেখানে বৃদ্ধ হবে, তখন যাবতীয় প্রকারের মূর্ত্তি তৈরী করে তোমরা শুধু তোমাদের জীবনই নষ্ট করবে! 26 সুতরাং আমি তোমাদের এখনই সাবধান করছি| স্বর্গ এবং পৃথিবী আমার সাক্ষী| যদি তোমরা ঐ সকল খারাপ কাজ করো, তাহলে তোমরা খুব শীঘ্রই ধ্বংস হবে| সেই দেশ অধিগ্রহণ করার জন্যে তোমরা এখন যর্দন নদী অতিক্রম করছো| কিন্তু তোমরা যদি কোনো প্রকার প্রতিমূর্ত্তি তৈরী করো, তাহলে তোমরা সেখানে বেশী দিন বাঁচতে পারবে না| না, তোমরা সম্পূর্ণ ধ্বংস হবে| 27 প্রভু তোমাদের বিভিন্ন জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন এবং প্রভু তোমাদের যেখানে পাঠাবেন সেই দেশগুলোতে যাওয়ার জন্য তোমাদের খুব অল্প সংখ্যকই জীবিত থাকবে| 28 সেখানে তোমরা পুরুষদের তৈরী দেবতাদের সেবা করবে - কাঠের অথবা পাথরের তৈরী দ্রব্যসামগ্রী যা দেখতে, শুনতে, খেতে অথবা ঘ্রাণ নিতে পারে না! 29 কিন্তু সেখানে ঐ অন্যান্য দেশগুলোতে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের অনুসন্ধান করবে এবং তোমরা যদি সর্বান্তঃকরণে এবং সম্পূর্ণ আত্মা দিয়ে তাঁর অনুসন্ধান করো, তাহলে তাঁকে খুঁজে পাবে| 30 যখন তোমরা সমস্যার মুখোমুখি হবে, যখন তোমরা বিপদে পড়বে, যখন ঐ সকল ঘটনা তোমাদের প্রতি ঘটবে - তখন তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসবে এবং তাঁর আদেশ পালন করবে| 31 তোমাদের প্রভু ঈশ্বর হলেন ক্ষমাপরাযণ ঈশ্বর| তিনি তোমাদের সেখানে পরিত্যাগ করবেন না| তিনি তোমাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবেন না| তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তিনি য়ে নিয়ম করেছিলেন সেটি তিনি ভুলবেন না| 32 “এরকম মহত্ কোনও কিছুর কথা কি কেউ কখনও শুনেছে? না! অতীতের দিকে ফিরে তাকাও| তোমাদের জন্মের আগে যা যা হয়েছিল সেগুলো সম্পর্কে ভাবো| ঈশ্বর যখন পৃথিবীতে মানুষের সৃষ্টি করেছিলেন সেই সময়ে ফিরে যাও| এই পৃথিবীতে যেখানে যা যা হয়েছে সেগুলোর দিকে ফিরে তাকাও| এর মতো মহত্ কোনো কিছু সম্পর্কে কেউ কি কখনও শুনেছে? না! 33 তোমরা ঈশ্বরকে আগুনের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলতে শুনেছিলে এবং তোমরা এখনও বেঁচে আছ| অন্য কোন দেশের সঙ্গে কি সেরকম কোনো কিছু কখনও হয়েছিলো? না! 34 এবং অন্য কোনোও দেবতা কি কখনও আরেকটি জাতির ভেতর থেকে নিজের জন্য একটি জাতিকে নেবার চেষ্টা করেছে? না! কিন্তু তোমরা নিজেরা দেখেছ য়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বর এই সকল চমত্কার কাজ করেছিলেন| তিনি তোমাদের ক্ষমতা এবং শক্তি দেখিয়েছিলেন| তোমরা অলৌকিক ও আশ্চর্য় জিনিসগুলি দেখেছ| তোমরা যুদ্ধ এবং ভয়ঙ্কর ব্যাপারগুলি যা প্রভু মিশরের ওপর ঘটিযেছেন তা দেখেছ| 35 প্রভু তোমাদের ঐ সব দেখিয়েছিলেন যাতে তোমরা জানতে পার য়ে তিনি হলেন ঈশ্বর| তাঁর মতো কোনও দেবতা নেই! 36 তিনি তোমাদের স্বর্গ থেকে তাঁর কন্ঠস্বর শোনালেন যাতে তোমাদের শিক্ষা দিতে পারেন| পৃথিবীতে তিনি তোমাদের তাঁর আগুন দেখিয়েছেন এবং তার মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন| 37 “প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ভালোবাসতেন, তাই তোমাদের অর্থাত্ তাদের উত্তরপুরুষদের মনোনীত করেছিলেন| এবং সেই কারণেই প্রভু তোমাদের সঙ্গে থেকে এবং তাঁর মহাপরাক্রমের সাহায্যে তিনি তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন| 38 যখন তোমরা আরও এগোচ্ছিলে সেই সময় প্রভু তোমাদের থেকে বৃহত্ এবং আরও বেশী শক্তিশালী জাতিগুলিকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন| প্রভু তোমাদের তাদের দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| সেখানে বাস করার জন্য তিনি তাদের দেশ তোমাদের দিয়েছিলেন এবং আজও তিনি সেই কাজই করে চলেছেন| 39 “সুতরাং আজ তোমরা অবশ্যই মনে করবে এবং মেনে নেবে য়ে প্রভুই হলেন ঈশ্বর| তিনি ওপরে স্বর্গের এবং নীচে পৃথিবীর ঈশ্বর| সেখানে অন্য কোনো ঈশ্বর নেই! 40 এবং আজ আমি তোমাদের তাঁর য়ে বিধি এবং আজ্ঞাসমূহ দিলাম সেগুলো তোমরা অবশ্যই মেনে চলবে| তাহলে সমস্ত কিছুই তোমাদের সঙ্গে এবং তোমাদের পরে তোমাদের য়ে সন্তানরা থাকবে তাদের সঙ্গে ভালোভাবে চলবে এবং প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন সেখানে তোমরা দীর্ঘদিন বাস করতে পারবে - এটি চিরদিনের জন্য তোমাদেরই হবে!” 41 এরপর মোশি যর্দন নদীর পূর্বদিকের তিনটি শহর বেছে নিলেন| 42 যদি কোনো ব্যক্তি দুর্ঘটনাক্রমে অপর কোনো এক ব্যক্তিকে হত্যা করে, তাহলে সে ঐ তিনটি শহরের য়ে কোনো একটিতে পালিয়ে য়েতে পারে এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না| কিন্তু সে নিরাপদ হবে যদি সে অপর ব্যক্তিটিকে ঘৃণা না করে থাকে এবং যদি তার তাকে হত্যা করার অভিপ্রায় না থেকে থাকে| 43 মোশি য়ে তিনটি শহর বেছেছিলেন সেগুলো ছিল: রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীর জন্য উচ্চসমভূমিতে অবস্থিত বেত্ সর, গাদের পরিবারগোষ্ঠীর জন্য গিলিয়দে অবস্থিত রামোত্, মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর জন্য বাশনে অবস্থিত গোলন| 44 মোশি ইস্রায়েলের লোকদের ঈশ্বরের ব্যবস্থাগুলি দিয়েছিলেন| 45 লোকরা মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পরে মোশি প্রভুর এই শিক্ষামালা, নিয়মাবলী এবং আজ্ঞাগুলি তাদের দিয়েছিলেন| 46 যখন তারা বৈত্পিযোরের অন্য পারে যর্দন নদীর পূর্বদিকের উপত্যকায ছিলেন, সেই সময় মোশি তাদের এই বিধিগুলো দিয়েছিলেন| হিষ্বোনে বসবাসকারী ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের দেশে তারা ছিলেন| মিশর থেকে বেরিয়ে আসার সময় (মোশি এবং ইস্রায়েলের লোকরা সীহোনকে পরাজিত করেছিলেন| 47 তারা সীহোন অধিকার করেছিলেন| এছাড়াও তারা বাশনের রাজা ওগের দেশ নিয়েছিলেন| এই দুজন ইমোরীয় রাজা যর্দন নদীর পূর্বদিকে বাস করতেন| 48 এই জমি অর্ণোন উপত্যকার সীমানায অরোযার থেকে সীওন (হর্মোণ) পর্বত পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল| 49 যর্দন নদীর পূর্বদিকের সমগ্র যর্দন উপত্যকা এই দেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল| দক্ষিণ দিকে এই দেশ মৃত সাগর পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল| পূর্ব দিকে এই দেশ পিস্গা পর্বতের পাদদেশ পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল|)
1 মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত লোককে আহ্বান করে তাদের বলেছিলেন, “ইস্রায়েলের লোকরা তোমরা অবশ্যই এই বিধিগুলি শিখবে এবং সেগুলি অনুসরণ করবে| এই বিধিসমুহ শোনো এবং সেগুলো মেনে চলার ব্যাপারে নিশ্চিত থেকো| 2 প্রভু, আমাদের ঈশ্বর হোরেব পর্বতে আমাদের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন| 3 প্রভু এই চুক্তি আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে করেন নি, কিন্তু করেছিলেন আমাদের সঙ্গে| হ্যাঁ, আজ আমরা যারা জীবিত আছি, এই আমাদের সকলের সঙ্গেই করেছিলেন| 4 সেই পর্বতে প্রভু তোমাদের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলেছিলেন| 5 কিন্তু তোমরা আগুন থেকে ভীত ছিলে এবং পর্বতের ওপরে যাওনি বলে প্রভু যা বলেছিলেন সেটি তোমাদের বলার জন্য আমি প্রভু ও তোমাদের মাঝখানে দাঁড়িয়েছিলাম| প্রভু বলেছিলেন, 6 ‘আমি প্রভু তোমাদের ঈশ্বর| তোমরা যেখানে ক্রীতদাস হয়েছিলে সেই মিশর থেকে আমি তোমাদের পথ দেখিয়ে বের করে নিয়ে এসেছিলাম| সুতরাং তোমরা অবশ্যই এই আজ্ঞাগুলো মানবে: 7 “তোমরা অবশ্যই আমাকে ছাড়া অন্য কোনোও দেবতার পূজা করবে না| 8 “তোমরা অবশ্যই কোনো প্রতিমা তৈরী করবে না| আকাশের ওপরের কোনো কিছুর অথবা পৃথিবীর ওপরের কোনো কিছুর অথবা জলের নীচের কোনো কিছুর মূর্ত্তি অথবা ছবি তোমরা তৈরী করবে না| 9 তোমরা অন্য কোনোও প্রকার মূর্ত্তির পূজা অথবা সেবা করবে না| কেন? কারণ আমি প্রভু তোমাদের ঈশ্বর| আমার লোকদের অন্য কোনো দেবতার পূজা করাকে আমি ঘৃণা করি|আমার বিরুদ্ধে য়ে সব লোক পাপ কাজ করে তারা আমার শত্রুতে পরিণত হয় এবং আমি ঐ সমস্ত লোকদের শাস্তি দেব| আমি তাদের সন্তানদের, তাদের পৌত্র ও পৌত্রীদের এবং এমনকি তাদের প্রপৌত্র, প্রপৌত্রীদেরও শাস্তি দেব| 10 কিন্তু য়ে সব লোকরা আমাকে ভালবাসে এবং আমার আজ্ঞাগুলো মেনে চলে, হাজার হাজার পুরুষ ধরে আমি তাদের পরিবারের প্রতি আমার বিশ্বস্ত ভালবাসা প্রদর্শন করব! 11 “তোমরা অবশ্যই ভুলভাবে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করবে না| যদি কোনো ব্যক্তি ভুলভাবে প্রভুর নাম ব্যবহার করে, তাহলে সেই ব্যক্তি দোষী এবং প্রভু তাকে নিরপরাধী বলে মনে করবেন না| 12 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর য়ে রকম আজ্ঞা করেছিলেন, সেই অনুসারে তোমরা অবশ্যই বিশ্রামের দিনটিকে একটি বিশেষ দিন হিসেবে পালন করবে| 13 কর্মস্থানে তোমরা সপ্তাহে ছয়দিন কাজ করবে| 14 কিন্তু প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য সপ্তম দিনটি হল বিশ্রামের দিন, সুতরাং সেই দিনে কোনো ব্যক্তির কাজ করা উচিত্ নয়| তোমরা, তোমাদের পুত্ররা এবং কন্যারা, তোমাদের শহরে বসবাসকারী বিদেশীরা অথবা তোমাদের পুরুষ অথবা স্ত্রী, ক্রীতদাসরা কেউই কাজ করবে না| এমন কি তোমাদের গরুদের, গাধাদের এবং অন্যান্য পশুদেরও কোনো কাজ করা উচিত্ হবে না| ঠিক তোমাদের মতোই তোমাদের ক্রীতদাসরা বিশ্রাম করবে| 15 ভুলো না য়ে মিশরে তোমরা ক্রীতদাস ছিলে| প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাঁর মহাশক্তির দ্বারা তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন| তিনি তোমাদের মুক্ত করেছিলেন| সেই কারণে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, বিশ্রামের দিনটিকে এক বিশেষ দিন হিসেবে পালন করার জন্য আদেশ করেছেন| 16 “ঈশ্বরের আজ্ঞা মত তোমরা অবশ্যই তোমাদের পিতামাতাকে সম্মান জানাবে| তোমরা এই আদেশ অনুসরণ করলে দীর্ঘজীবি হবে এবং প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিয়েছেন সেই দেশে তোমাদের মঙ্গল হবে| 17 “তোমরা নরহত্যা করো না| 18 “তোমরা ব্যভিচার করো না| 19 “তোমরা চুরি করো না| 20 “তোমরা প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না| 21 “তোমরা অবশ্যই অন্য কোনো ব্যক্তির স্ত্রীতে লোভ করবে না| তোমরা অবশ্যই তার বাড়ী, তার শস্যক্ষেত্র, তার পুরুষ দাস অথবা স্ত্রী দাসীকে, তার গরুদের বা গাধাদের অর্থাত্ প্রতিবেশীর অধিকৃত কোনো দ্রব্যসামগ্রীতেই লোভ করবে না|” 22 মোশি বলেছিলেন, “যখন তোমরা সকলে পর্বতে একসঙ্গে এসেছিলে, সেই সময়ে প্রভু তোমাদের সকলকে এই আদেশগুলো দিয়েছিলেন| প্রভু মহারবে আগুনের মধ্য থেকে, মেঘের মধ্য থেকে এবং ঘোর অন্ধকারের মধ্য থেকে কথা বলেছিলেন| আমাদের এই আদেশগুলো দেওয়ার পরে তিনি আর কিছুই বলেন নি| তিনি তাঁর কথাগুলো দুটি পাথরের ফলকের ওপরে লিখেছিলেন এবং সেই গুলো আমাকে দিয়েছিলেন| 23 “যখন পর্বতমালা আগুনে প্রজ্বলিত হচ্ছিল, সেই সময় তোমরা অন্ধকারের মধ্য থেকে গলার রব শুনতে পেয়েছিলে| সেই সময় প্রবীণরা এবং তোমাদের পরিবারগোষ্ঠীর অন্যান্য নেতারা আমার কাছে এসেছিল| 24 তারা বলেছিল, ‘প্রভু আমাদের ঈশ্বর আমাদের তাঁর মহিমা এবং তাঁর মহত্ব দেখিয়েছেন! আমরা তাঁকে আগুনের মধ্য থেকে কথা বলতে শুনেছিলাম! ঈশ্বর মানুষের সাথে কথা বলার পরেও সে য়ে বেঁচে থাকতে পারে তা আজ আমরা দেখলাম| 25 কিন্তু আমরা যদি আবার প্রভু, আমাদের ঈশ্বরকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে শুনি, নিশ্চিত আমরা মারা যাবো! সেই ভয়ঙ্কর আগুন আমাদের ধ্বংস করবে| আমরা মরতে চাই না| 26 কোনোও ব্যক্তি আগুনের মধ্য থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের কন্ঠস্বর শোনে নি, য়েমন আমরা শুনেছি এবং শুনে এখনও বেঁচে আছি! 27 মোশি তুমি কাছে যাও এবং প্রভু আমাদের ঈশ্বর যা বলেন তার সমস্তটা শোনো| এরপর প্রভু আমাদের ঈশ্বর তোমকে যা কিছু বলেন আমাদের বলো| আমরা তোমার কথা শুনব এবং তোমার কথামতো সমস্ত কাজ করব|’ 28 “তোমরা যা বলেছিলে প্রভু সেগুলো শুনে আমায় বলেছিলেন, ‘লোকরা যা বলছে, সেগুলো আমি শুনেছি এবং তারা ভালই বলেছে| 29 আমার ইচ্ছা তারা য়েন হৃদয়ের মধ্য থেকে সর্বদাই আমাকে সম্মান করে এবং আমার সমস্ত আদেশগুলো মেনে চলে| তাহলে তাদের এবং তাদের উত্তরপুরুষদের পক্ষে সমস্ত কিছুই চিরকালের জন্য ভালো হবে| 30 “‘যাও, লোকদের বলো তাদের তাঁবুতে ফিরে য়েতে| 31 কিন্তু তুমি, মোশি এখানে আমার কাছে দাঁড়িয়ে থাকো| আমি তোমাকে য়ে সমস্ত আজ্ঞা, বিধি এবং নিয়মসমূহ বলবো, সেগুলো তুমি অবশ্যই তাদের শিখিযে দেবে| আমি তাদের বাস করার জন্য য়ে দেশ দিচ্ছি সেই দেশে তারা অবশ্যই এই কাজগুলো করবে|’ 32 “সুতরাং প্রভু তোমাদের য়েমন আজ্ঞা করেছিলেন, সেইগুলো যত্ন সহকারে পালন করবে, তার ডান দিকে কি বাম দিকে ফিরবে না! 33 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর য়ে ভাবে আজ্ঞা করেছিলেন, তোমরা অবশ্যই ঠিক সেভাবেই জীবনযাপন করবে| তাহলেই তোমরা দীর্ঘজীবি হবে এবং তোমাদের পক্ষে সব কিছুই ভালো হবে| য়ে দেশ তোমাদের হবে সেই দেশে তোমরা দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে|
1 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর আমাকে তোমাদের এই আজ্ঞাসমুহ, বিধি এবং নিয়মসমূহ শেখাতে বলেছিলেন য়েন য়ে দেশে তোমরা বসবাস করতে যাচ্ছ সেখানে এই বিধিগুলো মেনে চলতে পার| 2 য়েন তোমরা এবং তোমাদের উত্তরপুরুষরা যতদিন বাঁচবে ততদিন তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে সম্মান জানাতে পার| তোমরা নিশ্চয়ই তাঁর সমস্ত বিধি এবং আজ্ঞাসমুহ মেনে চলবে, য়েগুলো আমি তোমাদের দিলাম| যদি তোমরা এটা করো, তাহলে সেই নতুন দেশে তোমাদের দীর্ঘ জীবন হবে| 3 ইস্রায়েলের লোকরা, শোনো এবং এই বিধিগুলো যত্ন সহকারে মেনে চলো; তাহলে তোমাদের মঙ্গল হবে| তোমরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে এবং তোমরা সেই দেশটিকে প্রচুর ভালো জিনিসে পরিপূর্ণ অবস্থায় পাবেঠিক য়েভাবে প্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| 4 “ইস্রায়েলের লোকরা শোনো! প্রভু, আমাদের ঈশ্বর হলেন একমাত্র প্রভু! 5 তোমরা নিশ্চয়ই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে তোমাদের সমস্ত হৃদয়, সমস্ত প্রাণ এবং তোমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে ভালোবাসবে| 6 আজ আমি তোমাদের য়ে আদেশগুলি দিলাম সেগুলো তোমরা সবসময় মনে রাখবে| 7 তোমাদের সন্তানদেরও ঐগুলো শেখানোর ব্যাপারে নিশ্চিত থাকবে| যখন তোমরা বাড়ীতে বসে থাকো এবং যখন তোমরা রাস্তায় হাঁট সেই সময় তোমরা এই সকল বিধিগুলো নিয়ে আলোচনা করবে| যখন তোমরা শুয়ে থাক এবং যখন তোমরা ঘুম থেকে ওঠো সেই সময় ঐগুলো নিয়ে আলোচনা করবে| 8 এই আজ্ঞাগুলি মনে রাখার সুবিধার জন্য সেগুলিকে তোমাদের হাতে এবং কপালে বেঁধে রাখো| 9 তোমাদের বাড়িগুলি দরজার খুঁটির ওপরে এবং তোমাদের ফটকগুলির ওপরে সেগুলোকে লিখে রাখো| 10 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইসহাক, এবং যাকোবের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| তোমাদের এই দেশ দেওয়ার জন্য প্রভু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| প্রভু সেই দেশ তোমাদের দেবেন এবং তোমরা য়েগুলো তৈরী করো নি সেই বৃহত্ এবং সম্পদশালী শহরগুলোও তিনি তোমাদের দেবেন| 11 প্রভু তোমাদের উত্তম এমন দ্রব্য়ে পরিপূর্ণ বাড়ী দেবেন, য়ে দ্রব্য তোমরা সেখানে রাখো নি| প্রভু তোমাদের এমন অনেক কূপ দেবেন যা তোমরা খনন করো নি| খেযে দেযে তৃপ্ত হলে পর প্রভু তোমাদের প্রচুর দ্রাক্ষার ক্ষেত এবং জলপাইযের গাছ দেবেন য়েগুলো তোমরা রোপণ করনি| 12 “কিন্তু খুব সাবধান! প্রভুকে ভুলো না| মনে রেখো তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে, কিন্তু প্রভু তোমাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন| 13 প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে সম্মান করো এবং কেবলমাত্র তাঁরই সেবা করো| শপথ করার সময় তোমরা কেবলমাত্র তাঁরই নাম ব্যবহার করবে, অন্য দেবতার নাম ব্যবহার করবে না| 14 অন্য দেবতার অনুসরণ করবে না| তোমাদের চর্তুদিকে বসবাসকারী জাতিগণের দেবতাদের তোমরা অনুসরণ করবে না| 15 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, যিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন তিনি নিজের গৌরব রক্ষা করতে উদ্য়োগ নেন, সুতরাং যদি তোমরা ঐ সকল অন্যান্য দেবতাদের পূজা করো, তাহলে প্রভু তোমাদের উপরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হবেন| তিনি তোমাদের এই পৃথিবী থেকে ধ্বংস করে দেবেন| 16 “মঃসাতে তোমরা য়েভাবে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিলে, সেভাবে তোমরা তাঁকে পরীক্ষা করবে না| 17 প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো মেনে চলার ব্যাপারে তোমরা নিশ্চিত থাকবে| তিনি তোমাদের য়ে শিক্ষা এবং বিধিসমুহ দিয়েছেন সেগুলো তোমরা অবশ্যই অনুসরণ করবে| 18 য়েগুলো ঠিক এবং ভালো, সেরকম কাজ তোমরা অবশ্যই করবে, য়েগুলো প্রভুকে খুশী করে| তাহলে সব কিছুতেই তোমরা সফল হবে এবং তোমরা সেই সুন্দর দেশে প্রবেশ করে তা অধিগ্রহণ করবে যা প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| 19 প্রভু য়েভাবে বলেছিলেন সেভাবেই তোমরা তোমাদের সমস্ত শত্রুদের বিতাড়িত করবে| ঈশ্বর যা করেছিলেন সেগুলো তোমাদের সন্তানদের শেখাও 20 “ভবিষ্যতে, তোমার সন্তান জিজ্ঞেস করতে পারে, ‘প্রভু আমাদের ঈশ্বর তোমাদের য়ে শিক্ষা দিয়েছিলেন সেগুলোর অর্থ কি?’ 21 তখন তুমি তোমার সন্তানকে বলবে, ‘আমরা মিশরে ফরৌণের ক্রীতদাস ছিলাম, কিন্তু প্রভু তাঁর মহান শক্তির সাহায্যে আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন| 22 আমাদের চোখের সামনে প্রভু চিহ্ন এবং আশ্চর্য়জনক কাজ করেছেন| আমরা তাঁকে মিশরের লোকদের প্রতি, ফরৌণের প্রতি এবং ফরৌণের বাড়ীর লোকদের বিরুদ্ধে এই কাজগুলো করতে দেখেছিলাম| 23 এবং তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই অনুসারে সেই দেশ দিতে আমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলেন| 24 এই শিক্ষাগুলো মেনে চলার জন্য প্রভু আমাদের আজ্ঞা দিয়েছিলেন| আমরা নিশ্চয়ই আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করবো| তাহলেই আজ আমরা য়েমন আছি ঠিক সেভাবেই প্রভু আমাদের বাঁচিয়ে রাখবেন এবং আমাদের ভালো করবেন| 25 প্রভু আমাদের ঈশ্বর, ঠিক য়েভাবে আমাদের আদেশ দিয়েছিলেন আমরা যদি সতর্কভাবে সমস্ত বিধি মেনে চলি, তাহলে তা আমাদের ধার্মিকতা হবে|’
1 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যখন তোমাদের নেতৃত্ব দিয়ে সেই দেশে নিয়ে যাবেন, য়ে দেশে তোমরা অধিগ্রহণের জন্য প্রবেশ করছো, তখন প্রভু তোমাদের সামনে অনেক জাতিকে দূর করে দেবেন - য়েমন হিত্তীয়, গির্গানীয, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয় তোমাদের থেকে অনেক বড় এবং অনেক শক্তিশালী সাতটি জাতি| 2 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, এই জাতিগুলোকে তোমাদের কাছে সমর্পণ করলে পরে তোমরা তাদের পরাজিত করবে এবং তাদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবে| তাদের সঙ্গে কোনোরকম নিয়ম কোরো না| তাদের ক্ষমা প্রদর্শন করো না| 3 তাদের মধ্যে কাউকে বিয়ে করো না এবং তোমাদের ছেলেমেয়েরাও য়েন ঐসব অন্য জাতির কাউকে বিয়ে না করে| 4 কারণ, ঐ সমস্ত লোকরা তোমাদের সন্তানদের আমাকে অনুসরণ করা থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাবে| তখন তোমাদের সন্তানরা অন্য দেবতাদের পূজা করবে এবং প্রভু তোমাদের প্রতি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হবেন| তিনি তোমাদের খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস করে দেবেন| 5 “ঐ জাতিগুলির প্রতি তোমরা অবশ্যই এগুলো করবে| তোমরা অবশ্যই তাদের পূজার বেদীগুলোকে ভেঙে দেবে এবং তাদের স্মরণ-স্তম্ভগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেবে| তোমরা তাদের আশেরার খুঁটিগুলি কেটে ফেলবে এবং তাদের মূর্ত্তিগুলোকেও আগুনে পুড়িয়ে দেবে! 6 কারণ তোমরা প্রভুর নিজের লোক| পৃথিবীর ওপরের সমস্ত জাতির মধ্য থেকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের তাঁর বিশেষ লোক হবার জন্য বেছে নিয়েছিলেন, সে লোকরা কেবলমাত্র তাঁরই হবে| 7 তোমরা অন্য জাতির থেকে সংখ্যায় অধিক ছিলে বলে প্রভু তোমাদের ভালোবেসে বেছে নেন নি, কিন্তু তোমরা সমস্ত জাতির মধ্যে সংখ্যায় খুবই কম ছিলে| 8 মহত্ শক্তির সাহায্যে প্রভু তোমাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন| ক্রীতদাস অবস্থা থেকে এবং মিশরের রাজা ফরৌণের অধীনতা থেকে তিনি তোমাদের মুক্ত করেছিলেন কারণ প্রভু তোমাদের ভালোবাসেন এবং তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই প্রতিজ্ঞা রাখতে চান| 9 “সুতরাং মনে রেখো, প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, হলেন একমাত্র ঈশ্বর এবং তোমরা তাঁর ওপরে আস্থা রাখতে পারো| তিনি তাঁর নিয়ম রক্ষা করেন| যারা তাঁকে ভালোবাসে এবং তাঁর আজ্ঞা মেনে চলে সেই সমস্ত লোকদের প্রতি তিনি তাঁর ভালোবাসা এবং দযা প্রদর্শন করেন| পরবর্তী এক হাজার বংশের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর ভালোবাসা এবং দযা প্রদর্শন করেন| 10 কিন্তু তাঁকে যারা ঘৃণা করে, প্রভু সেই সমস্ত লোকদের শাস্তি দেন| তিনি তাদের ধ্বংস করে দেবেন| তাঁকে যারা ঘৃণা করে, সেই সমস্ত লোকদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে তিনি দেরী করবেন না| 11 সুতরাং আমি আজ তোমাদের য়েগুলো দিলাম, সেই সমস্ত আদেশ, বিধি এবং নিয়ম মেনে চলার ব্যাপারে তোমরা খুবই সতর্ক থাকবে| 12 “তোমরা যদি এই সমস্ত বিধিগুলো মেনে চলো এবং সেগুলো পালন করার ব্যাপারে তোমরা যদি যত্ন নাও, তাহলে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে প্রেমের নিয়মে চলবেন, যা তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| 13 তিনি তোমাদের ভালোবাসবেন, আশীর্বাদ করবেন এবং তোমাদের সংখ্যায় বৃদ্ধি করবেন| তিনি তোমাদের সন্তানদের আশীর্বাদ করবেন এবং তোমাদের জমিগুলোকে উত্কৃষ্ট ফসলের দ্বারা সমৃদ্ধ করবেন| তিনি তোমাদের শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস এবং তেল দেবেন| তিনি তাঁর আশীর্বাদের সাহায্যে তোমাদের গরুগুলোকে বাছুরে সমৃদ্ধ এবং তোমাদের মেষগুলোকে মেষশাবকে সমৃদ্ধ করবেন| তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে দেশ দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই দেশে তোমরা এই সমস্ত আশীর্বাদ ভোগ করবে| 14 “সমস্ত জাতির থেকে তোমরা বেশী আশীর্বাদ পাবে| প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর সন্তান হবে| তোমাদের গরুগুলোরও বাছুর হবে 15 এবং প্রভু তোমাদের থেকে সমস্ত অসুখ দূর করে দেবেন| প্রভু তোমাদের আর সেই সাংঘাতিক অসুখগুলো দ্বারা আক্রান্ত হতে দেবেন না, য়েগুলো তোমাদের মিশরে হত| কিন্তু প্রভু তোমাদের শত্রুদের মধ্যে সেই অসুখের সংক্রমণ করাবেন| 16 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যাদের পরাজিত করার জন্য তোমাদের সাহায্য করেন, তোমরা সেই সমস্ত লোকদের অবশ্যই ধ্বংস করবে| তাদের জন্য দুঃখিত হয়ো না এবং তাদের দেবতার পূজা করো না, কারণ তা তোমাদের পক্ষে ফাঁদে পড়ার মতো হবে| 17 “তোমরা মনে মনে বোলো না, ‘এই সমস্ত দেশের লোকরা আমাদের থেকে শক্তিশালী| আমরা তাদের কি প্রকারে বেরিয়ে য়েতে বাধ্য করবো?’ 18 তোমরা তাদের ভয় করো না| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, ফরৌণ এবং মিশরের সমস্ত লোকদের প্রতি কি করেছিলেন সেগুলো তোমরা অবশ্যই মনে রাখবে| 19 তাদের তিনি য়ে সাংঘাতিক সমস্যায় ফেলেছিলেন এবং য়ে সব আশ্চর্য় কাজ করেছিলেন, সেগুলো তোমরা দেখেছিলে| তোমরা দেখেছিলে য়ে তোমাদের মিশর থেকে বের করে আনার জন্য প্রভু কিভাবে তাঁর মহান ক্ষমতা এবং শক্তি ব্যবহার করেছিলেন| তোমরা যাদের ভয় পাও সেই সমস্ত জাতির বিরুদ্ধেও প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, সেই একই কাজ করবেন| 20 “য়ে সমস্ত লোকরা তোমাদের কাছ থেকে পালাবে এবং নিজেদের লুকিয়ে রাখবে, প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাদের খুঁজে বের করার জন্য ভীমরুল পাঠাবেন য়েন অবশিষ্টরাও ধ্বংস হয়| 21 ঐ সমস্ত লোকদের সম্পর্কে ভীত হয়ো না| কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সঙ্গে আছেন| তিনিই একমাত্র মহান এবং ভয়ঙ্কর ঈশ্বর| 22 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, ঐ সমস্ত দেশের লোকদের ধীরে ধীরে তোমাদের দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করবেন| তোমরা তাদের সকলকে এক সময়ে ধ্বংস করতে পারবে না| যদি তোমরা তাই কর, তাহলে বন্য জন্তুর সংখ্যা এত বেশী পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে যা তোমাদের পক্ষে ক্ষতিকর হবে| 23 কিন্তু প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, ঐ সমস্ত জাতিগুলিকে তোমাদের হাতে সমর্পণ করবেন এবং তারা যতক্ষণ পর্য়ন্ত না ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, ততক্ষণ পর্য়ন্ত তিনি যুদ্ধ চলাকালীন তাদের বিভ্রান্ত করবেন| 24 তাদের রাজাদের পরাজিত করতে প্রভু তোমাদের সাহায্য করবেন| তোমরা তাদের হত্যা করবে এবং তারা য়ে কখনও জীবিত ছিল সে কথা পৃথিবীর লোক ভুলে যাবে| তাদের বিনষ্ট করা পর্য়ন্ত কেউ তোমাদের থামাতে সক্ষম হবে না| 25 “তোমরা অবশ্যই তাদের প্রতিমাগুলি আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে| ঐ প্রতিমার গায়ের রূপো অথবা সোনায় তোমরা লোভ করবে না এবং সেগুলি নিজেদের জন্য নেবে না| অন্যথায এ তোমাদের কাছে ফাঁদের মতো হবে - তা তোমাদের জীবন ধ্বংস করে দেবে| কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, প্রতিমা ঘৃণা করেন| 26 তোমরা তোমাদের বাড়ীতে অবশ্যই ঐরকম কোন সাংঘাতিক মূর্ত্তি নিয়ে আসবে না| অন্যথায তোমরাও ধ্বংসের জন্য ঐরকম অভিশপ্ত হবে. ঐ সমস্ত সাংঘাতিক জিনিসগুলোকে তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করবে এবং ঐ সমস্ত মূর্ত্তিগুলোকে অবশ্যই ধ্বংস করবে|
1 “তোমরা অবশ্যই সমস্ত আজ্ঞাগুলো মেনে চলবে য়েগুলো আজ আমি তোমাদের দিলাম| কারণ তাহলে তোমরা বেঁচে থাকবে, বৃদ্ধি পাবে এবং প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে দেশ দেবেন বলে শপথ করেছিলেন সেই দেশে প্রবেশ করবে| 2 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, 40 বছর ধরে মরুভূমিতে য়ে ভ্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেটার কথা তোমরা অবশ্যই মনে রাখবে| প্রভু তোমাদের পরীক্ষা করছিলেন| তিনি তোমাদের বিনযী করতে চেয়েছিলেন| তিনি তোমাদের মনের ভেতরের জিনিস জানতে চেয়েছিলেন| তিনি জানতে চেয়েছিলেন য়ে তোমরা তাঁর আদেশ মানবে কিনা| 3 প্রভু তোমাদের নম্র করেছিলেন এবং তোমাদের ক্ষুধার্ত করেছিলেন| তিনি তোমাদের মান্না খাইযেছিলেন - যা তোমরা আগে কখনও জানতে না, যা তোমাদের পূর্বপুরুষরা আগে কখনও দেখে নি| এই কাজগুলো প্রভু করেছিলেন যাতে তোমরা জানো য়ে কেবলমাত্র রুটিই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে না| মানুষের জীবন প্রভুর কথিত সমস্ত বাক্যের ওপর নির্ভর করে| 4 এই গত 40 বছরে তোমাদের জামাকাপড় পুরানো হয় নি এবং তোমাদের পাও ফোলে নি, কারণ প্রভু তোমাদের রক্ষা করেছিলেন| 5 তোমরা অবশ্যই মনে রাখবে য়ে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন ও সংশোধন করছিলেন য়েমন একজন পিতা তার পুত্রকে শিক্ষা দেয় এবং সংশোধন করে| 6 “তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো মেনে চলে তাঁকে অনুসরণ এবং শ্রদ্ধা করবে| 7 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের এক উত্তম দেশে নিয়ে য়েতে চলেছেন - য়ে দেশে অনেক নদী এবং জলপ্রবাহ আছে| সেখানে উপত্যকা এবং পাহাড়গুলোতে ভূমির ভেতর থেকে জল বেরিয়ে এসে প্রবাহিত হয়| 8 সেই দেশে গম এবং বার্লি, দ্রাক্ষালতা, ডুমুর গাছ এবং ডালিম আছে| সেই দেশে জলপাই তেল এবং মধু আছে| 9 সেখানে তোমাদের খাদ্যের অভাব হবে না এবং তোমাদের প্রযোজনীয সমস্ত কিছুই তোমরা পাবে| সেই দেশের পাথরগুলো লোহা| সেখানকার পাহাড় খুঁড়লে তোমরা তামা পাবে| 10 তোমরা যা খেতে চাও তা পেয়ে তৃপ্ত হবে এবং সেই সুন্দর দেশটি তোমাদের দেবার জন্য তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা করবে| 11 “সতর্ক হও| তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে ভুলো না| আমি আজ তোমাদের য়ে আজ্ঞা, বিধি এবং নিয়মসমুহ দিলাম সেগুলো মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক হও| 12 তাহলে তোমাদের খাওয়ার জন্য পর্য়াপ্ত পরিমাণ খাবার থাকবে এবং তোমরা সুন্দর বাড়ী বানাবে এবং তাতে বাস করবে| 13 তোমাদের গরু, মেষ এবং ছাগলগুলো সংখ্যায় বাড়বে| তোমরা প্রচুর সোনা এবং রূপো পাবে| সমস্ত কিছুই তোমরা প্রচুর পরিমাণে পাবে| 14 যখন সেগুলো হয়, সেসময় যাতে তোমরা অহঙ্কারী না হও সে ব্যাপারে তোমরা অবশ্যই সতর্ক থাকবে| তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে ভুলবে না| তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে; কিন্তু প্রভু তোমাদের মুক্ত করে সেই দেশ থেকে নিয়ে এসেছিলেন| 15 সেই বিশাল এবং সাংঘাতিক মরুভূমির মধ্য দিয়ে প্রভু তোমাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| সেই মরুভূমিতে বহু বিষাক্ত সাপ এবং কাঁকড়াবিছে ছিল| জমি ছিল শুকনো এবং সেখানে কোথাও জল ছিল না| কিন্তু ঈশ্বর পাথরের ভেতর থেকে তোমাদের জল দিয়েছিলেন| 16 মরুভূমিতে প্রভু তোমাদের মান্না খাইযেছিলেন - য়েটা তোমাদের পূর্বপুরুষরা কোনোদিন দেখে নি| প্রভু তোমাদের পরীক্ষা করেছিলেন, বিনযী করেছিলেন যাতে শেষে সমস্ত কিছু তোমাদের ভালো হয়| 17 তোমরা মনে মনেও বোলো না, ‘আমি আমার নিজের শক্তি এবং সামর্য়্থের দ্বারা এই সমস্ত সম্পদ পেয়েছিলাম|’ 18 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, স্মরণ করো কারণ তিনিই তোমাদের ঐ সম্পদ লাভ করার জন্য শক্তি দিয়েছিলেন, য়েন তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তিনি য়ে চুক্তি করেছিলেন সেটিকে রক্ষা করতে পারেন, ঠিক য়েমন তিনি আজও করছেন| 19 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে কখনও ভুলো না| কখনও অন্য দেবতাদের অনুসরণ কোরো না! তাদের পূজা এবং সেবা কোরো না| যদি তোমরা সেটা করো, তাহলে আমি আজ তোমাদের সাবধান করলাম: তোমরা নিশ্চিত ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| 20 প্রভু তোমাদের জন্য অন্যান্য জাতিগুলোকে ধ্বংস করছেন; কিন্তু তাঁর কথা না শুনলে তোমরাও ঠিক তাদের মতোই ধ্বংস হবে!
1 “ইস্রায়েলের লোকরা শোনো! তোমরা আজ যর্দন নদী অতিক্রম করে যাবে| তোমাদের থেকে বৃহত্তর এবং শক্তিশালী জাতিগোষ্ঠীর লোকদের জোর করে বের করে দেওয়ার জন্য তোমরা সেই দেশে যাবে| তাদের শহরগুলো বড় এবং আকাশের মতো উঁচু দেওয়ালে ঘেরা| 2 সেখানকার লোকরা লম্বা এবং শক্তিশালী, তারা হল অনাকীয়| তোমরা ঐ লোকদের সম্পর্কে জানো| তোমরা আমাদের গুপ্তচরদের বলতেও শুনেছিলে, ‘অনাকীয়দের বিরুদ্ধে কেউ জিততে পারে না|’ কিন্তু তোমরা নিশ্চিত থাকতে পারো য়ে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের আগে নদী অতিক্রম করে যাবেন এবং প্রভু হলেন আগুনের মতো যা ধ্বংস করে ঈশ্বর ঐ সমস্ত জাতির লোকদের ধ্বংস করবেন| তিনি তাদের জয় করবেন| তোমরা ঐ সমস্ত জাতির লোকদের বেরিয়ে য়েতে বাধ্য করবে| প্রভু তোমাদের কাছে শপথ করেছেন সেই অনুসারেই তোমরা তাদের তাড়াতাড়ি ধ্বংস করবে| 3 4 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের জন্যই ঐ সমস্ত জাতির লোকদের বেরিয়ে য়েতে বাধ্য করবেন| তখন তোমরা মনে মনেও কখনও বোলো না, ‘প্রভু আমাদের এই দেশে বাস করার জন্য নিয়ে এসেছেন কারণ আমরা ন্যায়পরাযণ লোক!’ সেটা কিন্তু কারণ নয়| প্রভু ঐ সমস্ত জাতির লোকদের বের করে দিয়েছিলেন, তাদের দুর্নীতির জন্য, তোমাদের ধার্মিকতার জন্য নয়| 5 তোমরা তাদের দেশ অধিগ্রহণ করার জন্য সেখানে যাচ্ছ, তার কারণ তোমরা ভালো এবং সঠিকভাবে জীবনযাপন কর বলে নয়; কিন্তু তাদের দুষ্টতার কারণেই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, ঐ সমস্ত লোকদের বের করে দিয়েছিলেন, যাতে তোমরা ঐ দেশে প্রবেশ করতে পার| এছাড়া প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইসহাক এবং যাকোবের কাছে য়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে চান| 6 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের বাস করার জন্য সেই উত্তম দেশ তোমাদের দিচ্ছেন, তোমরা ভাল বলে নয়, তোমরা খুবই একগুঁযে লোক বলে! 7 “ভুলো না য়ে মরুভূমিতে তোমরা, প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে ক্রোধান্বিত করেছিলে! তোমরা য়েদিন মিশর ত্যাগ করেছিলে সেই দিন থেকে এই স্থানে আসা পর্য়ন্ত তোমরা প্রভুকে মেনে চলতে অস্বীকার করেছ| 8 হোরেব পর্বতে তোমরা প্রভুকে ক্রুদ্ধ করেছিলে| তোমাদের ধ্বংস করার জন্য প্রভু যথেষ্ট ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন! 9 পাথরের ফলকগুলি পাওয়ার জন্য আমি পর্বতের ওপরে গিয়েছিলাম| প্রভু তোমাদের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছিলেন সেগুলো ঐ পাথরের ওপরে লেখা ছিল| 40 দিন এবং 40 রাত্রি আমি ঐ পর্বতের ওপরে ছিলাম| আমি কোনো খাবার খাই নি অথবা জলও পান করি নি| 10 প্রভু আমাকে দুটি পাথরের ফলক দিয়েছিলেন| ঈশ্বর তাঁর নিজের আঙুলের সাহায্যে ঐ পাথরগুলোকে ওপরে তাঁর আদেশগুলি লিখেছিলেন| তোমরা সকলে যখন পর্বতে একত্রিত হয়েছিলে সেই সময় তিনি আগুনের মধ্য থেকে তোমাদের যা বলেছিলেন সেই সমস্তই তিনি তাতে লিখেছিলেন| 11 “40দিন এবং 40 রাত্রির শেষে, প্রভু আমাকে পাথরের ফলক দুটি দিয়েছিলেন| 12 তখন প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘ওঠো, তাড়াতাড়ি এখান থেকে নীচে যাও| তুমি য়ে লোকদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলে, তারা নিজেদের ধ্বংস করেছে| তারা খুব তাড়াতাড়ি আমার আদেশ পালন করা বন্ধ করে দিয়ে সোনা গলিযে নিজেদের জন্য এক মূর্ত্তি তৈরী করেছে|’ 13 “প্রভু আমাকে আরও বলেছিলেন, ‘আমি এই সমস্ত লোকদের লক্ষ্য করেছি| তারা খুবই একগুযো, 14 ঐ সমস্ত লোকদের আমি ধ্বংস করব, যাতে কেউই তাদের নাম পর্য়ন্ত না মনে রাখে| এরপর আমি তোমার থেকে আরেকটি জাতি তৈরী করব, যারা এই সমস্ত লোকদের থেকে শক্তিশালী এবং বৃহত্ হবে|’ 15 “এরপর আমি রওনা হয়ে পর্বতের ওপর থেকে নেমে এসেছিলাম| পর্বতটি আগুনে পুড়েছিলো; এবং চুক্তির সেই ফলক দুটি আমার হাতে ছিল| 16 আমি লক্ষ্য করে দেখেছিলাম য়ে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছ| আমি সেই বাছুর দেখেছিলাম য়েটা গলানো সোনা দিয়ে তৈরী করেছিলে| তোমরা খুব তাড়াতাড়ি প্রভুর আজ্ঞা মেনে চলতে অস্বীকার করেছিলে| 17 সেই কারণে আমি পাথরের ফলক দুটিকে নিয়ে সেগুলোকে নীচে ছুঁড়ে ফেলেছিলাম| সেখানে তোমাদের চোখের সামনে আমি ফলক দুটিকে টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে ফেলেছিলাম| 18 এর পর আমি আগে য়েমন করেছিলাম ঠিক সেভাবে 40 দিন এবং 40 রাত্রি মাটির দিকে মুখ করে প্রভুর সামনে নত হয়েছিলাম| আমি কোনো প্রকার খাদ্য গ্রহণ করি নি অথবা কোনো জলও পান করি নি, কারণ তোমরা পাপ করেছিলে, তোমরা এমন কাজ করেছিলে যা প্রভুর কাছে মন্দ, এ কাজ করে তোমরা তাঁকে ক্রুদ্ধ করেছিলে| 19 আমি প্রভুর ভযানক ক্রোধ সম্পর্কে ভীত ছিলাম| তিনি তোমাদের ধ্বংস করার পক্ষে যথেষ্ট ক্রোধান্বিত হয়েছিলেন; কিন্তু প্রভু এবারও আমার কথা শুনেছিলেন| 20 হারোণের ওপরে ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন যা তাকে ধ্বংস করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল| সেই কারণে আমি সেই সময় হারোণের জন্যও প্রার্থনা করেছিলাম| 21 আমি সেই সাংঘাতিক জিনিসটিকে অর্থাত্ তোমাদের তৈরী বাছুরটিকে নিয়ে আগুনে পুড়িয়েছিলাম| আমি এটিকে টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গেছিলাম এবং ধূলোয় পরিণত না হওয়া পর্য়ন্ত সেই টুকরোগুলোকে পিষেছিলাম| এরপর পর্বত থেকে য়ে নদী নেমে এসেছে তার মধ্যে সেই ধূলো ছুঁড়ে ফেলেছিলাম| 22 “এছাড়াও তবিয়েরাতে, মঃসাতে এবং কিব্রোত্-হত্তাবাতে তোমরা প্রভুকে ক্রুদ্ধ করেছিলে| 23 প্রভু যখন তোমাদের কাদেশ-বর্ণেয় ত্যাগ করতে বলেছিলেন সে সময় তোমরা তাঁর কথা মানো নি| তিনি বলেছিলেন, ‘ওপরে যাও, আমি তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছি সেই দেশ অধিগ্রহণ কর|’ কিন্তু তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, মেনে চলতে অস্বীকার করেছিলে| তোমরা তাঁর ওপরে আস্থা রাখো নি| তোমরা তাঁর আদেশ শোন নি| 24 যখন থেকে আমি তোমাদের জানি তোমরা সব সময় প্রভুকে মেনে চলতে অস্বীকার করেছ| 25 “সেই কারণে 40 দিন এবং 40 রাত্রি আমি প্রভুর সামনে নতজানু হয়েছিলাম কারণ ঈশ্বর বলেছিলেন তিনি তোমাদের ধ্বংস করবেন| 26 আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলাম: প্রভু আমার গুরু, তোমার লোকদের ধ্বংস কোরো না| তারা তোমারই| তুমি তাদের মুক্ত করেছিলে এবং তোমার মহত্ ক্ষমতা এবং শক্তির সাহায্যে তাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলে| 27 তোমার সেবক অব্রাহাম, ইসহাক এবং যাকোবের কাছে তোমার প্রতিজ্ঞার কথা মনে কর| এই লোকদের একগুঁযেমি, তাদের মন্দ পথ এবং পাপের দিকে দেখো না| 28 যদি তুমি তোমার লোকদের শাস্তি দাও, মিশরীয়রা বলতে পারে, ‘প্রভু তাদের কাছে য়ে দেশ দান করবার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই দেশে তাদের নিয়ে য়েতে তিনি পারেন নি এবং তিনি তাদের ঘৃণা করতেন, সেই কারণে তিনি তাদের হত্যা করার জন্য তাদের মরুভূমিতে নিয়ে গিয়েছিলেন|’ 29 কিন্তু তারা তোমারই লোক, প্রভু| তারা তোমারই| তোমার মহত্ ক্ষমতা এবং শক্তির সাহায্যে তুমি তাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলে|
1 “সেই সময় প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘প্রথম বারের দুটি পাথরের ফলকের মতো তুমি আবার পাথর কেটে বের করবে| এরপর তুমি পর্বতের ওপরে আমার কাছে আসবে| এছাড়াও একটি কাঠের বাক্স তৈরী কর| 2 আমি পাথরের ফলকগুলির ওপরে সেই একই কথা লিখব য়েগুলো প্রথমটির ওপরে লেখা ছিল - য়েগুলো তুমি ভেঙ্গেছিলে| এরপর তুমি অবশ্যই এই ফলকগুলিকে বাক্সের মধ্যে রাখবে|” 3 “সেই কারণে আমি শিটীম কাঠ দিয়ে সিন্দুক তৈরী করেছিলাম| প্রথম দুটোর মতো আমি দুটো পাথরের ফলক কেটেছিলাম| এরপর ঐ দুটি ফলক হাতে নিয়ে আমি পর্বতের ওপরে উঠে গিয়েছিলাম| 4 প্রভু পাথরগুলোর ওপরে ঐ একই কথা লিখেছিলেন য়েগুলো তিনি আগে লিখেছিলেন - সেই দশ আজ্ঞা, যা তোমাদের সকলের সামনে পর্বতের ওপরে আগুনের মধ্য থেকে তিনি আদেশ করেছিলেন| এরপর প্রভু সেই ফলক দুটি আমাকে দিয়েছিলেন| 5 আমি পর্বতের ওপর থেকে নীচে ফিরে এসে আমার তৈরী সিন্দুকের মধ্যে সেই পাথরগুলোকে রেখেছিলাম| প্রভু আমাকে আজ্ঞা করেছিলেন ওগুলোকে সেখানে রাখতে, ফলকগুলো এখনও সেই সিন্দুকেই আছে|”( 6 ইস্রায়েলের লোকরা বেরোত্-বেনেযা-কন এর লোকদের কূপগুলি থেকে যাত্রা করে মোষেরা পর্য়ন্ত এসেছিল| সেখানে হারোণ মারা গিয়েছিলেন এবং তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল| হারোণের জায়গায় হারোণের পুত্র ইলিয়াসর যাজক হয়েছিলেন| 7 এরপর ইস্রায়েলের লোকরা মোষেরো থেকে গুধগোদাযে গিয়েছিল এবং গুধগোদায থেকে নদীবহুল দেশ ষট্বাথায গিয়েছিল| 8 সেই সময় প্রভু তার বিশেষ কাজের জন্য অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠী থেকে লেবি পরিবারগোষ্ঠীকে আলাদা করেছিলেন| প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করাই ছিল তাদের কাজ| তারা প্রভুর সামনে যাজক হিসেবে সেবা করত এবং প্রভুর নাম করে লোকদের আশীর্বাদ করা ছিল তাদের কাজ| তারা আজও এই বিশেষ কাজটি করে| 9 এই কারণে লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা দেশের কোনো অংশ পায় নি, য়েরকম অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীরা পেয়েছিল| লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা তাদের অংশ বা অধিকার হিসাবে প্রভুকে পেয়েছে| প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তাদের কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন|) 10 “প্রথম বারের মতোই আমি পর্বতের ওপরে 40 দিন এবং 40 রাত্রি অতিবাহিত করেছিলাম| সেই সময় প্রভু আবার আমার কথা শুনেছিলেন| প্রভু তোমাদের ধ্বংস না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন| 11 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘যাও এবং লোকদের তাদের যাত্রাপথে নেতৃত্ব দাও| য়ে দেশ আমি তাদের দেব বলে তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, তারা সেই দেশের অভ্যন্তরে যাবে এবং সেখানে বাস করবে|’ 12 “এখন হে ইস্রায়েলের লোকরা, শোনো! প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, প্রকৃতই তোমাদের কাছে থেকে কি আশা করেন? ঈশ্বর চান য়ে তোমরা তাঁকে শ্রদ্ধা করবে এবং তিনি যা বলেন সেটা করবে| ঈশ্বর চান য়ে তোমরা তাঁকে ভালোবাসবে এবং তোমাদের সমস্ত হৃদয় এবং সমস্ত আত্মা দিয়ে তাঁর সেবা করবে| 13 সেই কারণে আমি আজ তোমাদের য়েগুলো দিচ্ছি সেই বিধিসমূহ এবং আজ্ঞাসমুহ তোমরা মেনে চলো| তোমাদের ভালোর জন্যই এই নিয়মাবলী এবং আজ্ঞাসমুহ| 14 “দেখ, সমস্ত কিছুই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের| স্বর্গ এবং উচ্চতম স্বর্গ, পৃথিবী এবং তার ওপরের সমস্ত কিছুই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের| 15 প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের খুবই ভালোবাসতেন| তিনি তাদের এতই ভালোবাসতেন য়ে তিনি তোমাদের অর্থাত্ তাদের উত্তরপুরুষদের বেছেছিলেন| অন্যান্য জাতির মধ্যে থেকে তিনি তোমাদের মনোনীত করেছেন আর তোমরা আজও তাঁর বিশেষ জন| 16 “জেদী হয়ো না| তোমাদের হৃদয় সম্পূর্ণরূপে প্রভুকে দান কর| 17 কারণ প্রভুই হলেন তোমাদের ঈশ্বর| তিনি হলেন সকল ঈশ্বরের ঈশ্ব এবং সকল প্রভুর প্রভু| তিনি হলেন মহান, বীর্য়্য়বান এবং ভয়ঙ্কর ঈশ্বর| প্রভুর কাছে প্রত্যেক ব্যক্তিই সমান| প্রভু তাঁর মন পরিবর্তনের জন্য উত্কোচ নেন না| 18 অনাথ এবং বিধবারা যাতে ন্যায় বিচার পায় সে দিকে তিনি দৃষ্টি রাখেন আর তিনি বিদেশীদেরও ভালোবাসেন| তিনি তাদের খাদ্য এবং কাপড় দেন| 19 সুতরাং তোমরা অবশ্যই ঐ সমস্ত বিদেশীদের ভালোবাসবে, কারণ মিশরে তোমরা নিজেরাই বিদেশী ছিলে| 20 “তোমরা অবশ্যই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, শ্রদ্ধা করবে এবং কেবলমাত্র তাঁরই উপাসনা করবে| তাঁকে কখনও ত্যাগ কোরো না| তোমরা যখন প্রতিজ্ঞা করবে, তখন অবশ্যই কেবলমাত্র তাঁরই নাম ব্যবহার করবে| 21 তোমরা কেবল তাঁরই প্রশংসা করবে| তিনি হলেন তোমাদের ঈশ্বর| তিনি তোমাদের জন্য মহত্ এবং আশ্চর্য়জনক কাজ করেছেন| তোমরা নিজেদের চোখে সেগুলো দেখেছ| 22 তোমাদের পূর্বপুরুষরা যখন মিশরে নেমে গিয়েছিল, তখন সেখানে কেবলমাত্র 70 জন লোক ছিল| এখন প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের লোকসংখ্যা আকাশের অসংখ্য তারার মতো প্রচুর করেছেন|
1 “সুতরাং তোমরা অবশ্যই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, ভালবাসবে| তিনি তোমাদের য়েগুলো করতে বলেন সেগুলো তোমরা অবশ্যই করবে| তোমরা নিশ্চয়ই তাঁর বিধি, নিয়ম এবং আজ্ঞাসকল সবসময়ে মেনে চলবে| 2 আজ মনে কর তোমাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, য়ে সমস্ত মহত্ কাজগুলো করেছেন| তোমাদের সন্তানরা নয়, তোমরাই ঐ সমস্ত জিনিসগুলো ঘটতে দেখেছিলে এবং তাঁর শাস্তি দেখেছিলে| তোমরা দেখেছিলে প্রভু কত মহত্, কত শক্তিমান| 3 মিশরে তিনি মিশরের রাজা ফরৌণ এবং তার সমস্ত দেশের প্রতি য়ে সব অলৌকিক কাজ করেছিলেন, সেগুলো তোমরা দেখেছিলে| 4 মিশরের সৈন্যদের প্রতি - তাদের ঘোড়াগুলোর এবং রথগুলোর তিনি কি করেছিলেন সেগুলো তোমরা দেখেছিলে| তারা তোমাদের তাড়া করেছিল, কিন্তু প্রভু সূফ সাগরের জল তাদের ওপর দিয়ে বইয়ে দিলেন| তোমরা প্রভুকে তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিতে দেখেছিলে| 5 এই স্থানে না আসা পর্য়ন্ত মরুভূমিতে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের জন্য কি করেছিলেন সেই সমস্ত জিনিস তোমরা দেখেছিলে| 6 রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীর ইলীয়াসরের পুত্র দাথন এবং অবীরাম এর প্রতি প্রভু কি করেছিলেন সেটা তোমরা দেখেছিলে, যখন ভূমি মুখের মতো খুলে গিয়ে ঐ সমস্ত লোকদের গ্রাস করেছিল, সেই ঘটনা ইস্রায়েলের সমস্ত লোক দেখেছিল| এটি তাদের পরিবারবর্গের, তাদের তাঁবুগুলোকে এবং তাদের সমস্ত পরিচারকদের এবং পশুদের গ্রাস করেছিল| 7 প্রভু য়ে সমস্ত মহত্ কাজগুলো করেছিলেন সেগুলো তোমরাই দেখেছিলে, তোমাদের সন্তানরা নয়! 8 “সুতরাং আমি আজ তোমাদের য়ে সমস্ত আজ্ঞাগুলো বললাম, সেগুলো তোমরা অবশ্যই মানবে| তাহলেই তোমরা শক্তিশালী হবে এবং তোমরা যর্দন নদী অতিক্রম করতে ও য়ে দেশে প্রবেশ করতে চলেছ সেই দেশ অধিগ্রহণ করতে সক্ষম হবে| 9 তাহলেই তোমরা সেই দেশে অনেকদিন বেঁচে থাকবে| প্রভু সেই দেশ তোমাদের পূর্বপুরুষদের এবং তাদের সমস্ত উত্তরপুরুষদের দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| এই দেশটি অনেক ভালো জিনিসে পরিপূর্ণ| 10 তোমরা য়ে দেশ অধিকার করতে চলেছ সেটি সেই মিশর দেশের মত নয় য়ে দেশ থেকে তোমরা বের হয়ে এসেছিলে| মিশরে তোমরা তোমাদের দানা শস্য রোপণ করতে এবং তারপরে জল দেওয়ার জন্য তোমরা পাযের সাহায্যে কৃত্রিম খাল থেকে সেচ করে জল আনতে, য়েভাবে তরকারির বাগানে জল দিতে সেইভাবে| 11 কিন্তু তোমরা য়ে দেশ খুব শীঘ্রই অধিকার করবে তাতে অনেক পর্বত এবং উপত্যকা আছে এবং দেশটি তার রয়োজনীয় জল পায় আকাশের বৃষ্টি থেকে| 12 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, সেই দেশ সম্পর্কে যত্নবান| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, বছরের প্রথম থেকে শেষ পর্য়ন্ত সেই দেশের উপর লক্ষ্য রাখেন| 13 “প্রভু বলেন, ‘আমি আজ তোমাদের য়ে আজ্ঞাগুলো দিলাম সেগুলো তোমরা নিশ্চয়ই খুব সতর্কভাবে শুনবে| তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে ভালোবাসবে এবং তোমাদের সমস্ত মন এবং সমস্ত প্রাণ দিয়ে তাঁর সেবা করবে| 14 যদি তোমরা এটি করো তাহলে আমি ঠিক সময়ে তোমাদের দেশের জন্য বৃষ্টি পাঠাবো| আমি শরত্কালের বৃষ্টি এবং বসন্তকালের বৃষ্টি পাঠাবো| তাহলেই তোমরা তোমাদের দানা শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস এবং তেল সংগ্রহ করতে পারবে| 15 এবং আমি তোমাদের পশুদের জন্য তোমাদের মাঠগুলোতে ঘাস জন্মাব, তাতে তোমাদের যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যের সংস্থান হবে|’ 16 “কিন্তু সাবধান! য়েন তোমাদের হৃদয় ভ্রান্ত না হয় এবং তোমরা ঘুরে অন্যান্য দেবতাদের সেবা এবং পূজা না কর| 17 তা করলে ঈশ্বর তোমাদের প্রতি ভীষণ ক্রুদ্ধ হবেন| তিনি আকাশ রুদ্ধ করে দেবেন এবং কোনো বৃষ্টি হবে না| জমিতে কোনো ফসল উত্পন্ন হবে না| এবং প্রভু তোমাদের য়ে উত্তম দেশ দিচ্ছেন সেই দেশে তোমরা খুব শীঘ্রই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে| 18 “আমি তোমাদের য়ে আজ্ঞাগুলো দিলাম সেগুলো তোমরা মনে রাখবে| সেগুলো তোমরা তোমাদের হৃদয়ে গেঁথে রাখো| আজ্ঞাগুলোকে লেখ, সেগুলোকে হাতে বেঁধে রাখ এবং আমার বিধিগুলো মনে রাখার উপায় হিসেবে তা তোমাদের কপালে বেঁধে রাখ| 19 এই বিধিগুলো তোমাদের সন্তানদেরও শেখাও| যখন তোমরা তোমাদের বাড়ীতে বসে থাকবে, যখন তোমরা রাস্তায় হাঁটবে, যখন তোমরা শুয়ে থাকবে এবং যখন তোমরা উঠবে তখন এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করো| 20 তোমাদের বাড়িগুলির দরজার খুঁটির ওপরে এবং ফটকগুলির ওপরে এই আজ্ঞাগুলোক লিখে রাখ| 21 তাহলে প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে দেশের জন্য প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই দেশে তোমরা এবং তোমাদের সন্তানরা উভয়েই দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে| পৃথিবীর ওপরে আকাশ যতদিন থাকবে তোমরাও সেই দেশে ততদিন থাকবে| 22 “আমি তোমাদের য়ে আজ্ঞাগুলো অনুসরণ করতে বলেছিলাম সেগুলো মেনে চলার ব্যাপারে তোমরা খুব সতর্ক হবে: প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, ভালোবাসো, তাঁর নির্দেশিত সব পথগুলো অনুসরণ কর এবং তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাক| 23 তাহলে তোমরা যখন সেই দেশের ভিতরে যাবে, প্রভু তখন অন্যান্য জাতির লোকদের সেই দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবেন| য়ে জাতিগুলি তোমাদের থেকে বৃহত্তর এবং শক্তিশালী তাদের কাছ থেকে তোমরা দেশটি নিয়ে নেবে| 24 য়েখান দিয়ে তোমরা হাঁটবে সেই সমস্ত স্থান তোমাদের হবে| তোমাদের দেশ দক্ষিণের মরুভূমি থেকে উত্তরে লিবানোন পর্য়ন্ত বিস্তৃত হবে| এটি আবার পূর্বদিকে ফরাত্ নদী থেকে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত বিস্তৃত হবে| 25 কোনো ব্যক্তি তোমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সক্ষম হবে না| তোমরা সেই দেশে যেখানেই যাবে, প্রভু তোমাদের ঈশ্বর সেখানকার লোকদের তোমাদের সম্পর্কে ভীত করে দেবেন| এগুলোই প্রভু তোমাদের কাছে পূর্বে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| 26 “আজ আমি তোমাদের আশীর্বাদ অথবা অভিশাপ এ দুটির মধ্যে য়ে কোনো একটি পছন্দ করতে দিচ্ছি| 27 আজ আমি তোমাদের য়েগুলো বলেছি, প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের সেই আজ্ঞাগুলো যদি তোমরা শোন এবং মান্য করো তাহলে তোমরা আশীর্বাদ পাবে| 28 কিন্তু তোমরা যদি প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের, আজ্ঞা না শোন এবং না মানো এবং আমি আজ তোমাদের য়ে ভাবে আদেশ করলাম সেভাবে জীবনধারণ না করে অন্যান্য দেবতাদের অনুসরণ করো, তবে তোমরা অভিশাপগ্রস্ত হবে| 29 “তোমরা য়ে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেই দেশে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে গেলে তোমরা গরিষীম পর্বতের শিখরে যাবে এবং সেখান থেকে লোকদের উদ্দেশ্যে আশীর্বাদ বাণী পড়বে এবং তারপর তোমরা এবল পর্বতের শিখরে যাবে এবং সেখান থেকে লোকদের প্রতি অভিশাপসূচক বার্তা পড়বে| 30 যর্দন উপত্যকায বসবাসকারী কনানীয় লোকদের দেশে যর্দন নদীর অপর পারে এই পর্বতমালা অবস্থিত| এই পর্বতমালা পশ্চিমদিকে অবস্থিত, গিল্গল শহরের কাছে মোরির এলোন বনের থেকে খুব দূরে নয়| 31 তোমরা যর্দন নদী অতিক্রম করে যাবে| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন তোমরা সেই দেশ অধিগ্রহণ করবে| এই দেশ তোমাদের হবে| যখন তোমরা এই দেশে বসবাস করতে শুরু করবে তখন, 32 আমি আজ তোমাদের য়ে সমস্ত বিধিসমুহ এবং নিয়মসমূহ দিলাম সেই সমস্ত তোমরা অবশ্যই খুব সতর্কভাবে মেনে চলবে|
1 “প্রভু, তোমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ অধিকার করতে দিচ্ছেন সেই নতুন দেশে তোমরা এই সমস্ত বিধিসমুহ এবং নিয়মসমূহ অবশ্যই মেনে চলবে| তোমরা যতদিন এই দেশে বাস করবে ততদিন পর্য়ন্ত তোমরা অবশ্যই এই বিধিসমূহ যত্নসহকারে মেনে চলবে| 2 এখন সেখানে য়ে জাতিরা বাস করছে তাদের কাছ থেকে যখন তোমরা দেশটি অধিগ্রহণ করবে, তখন ঐ সমস্ত জাতির লোকরা যেখানে তাদের দেবতাদের পূজা করে সেই জায়গাগুলো তোমরা অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে| এই স্থানগুলো হল উঁচু পাহাড়ের ওপরে এবং সবুজ গাছপালার নীচে| 3 তোমরা অবশ্যই তাদের আশেরার স্তম্ভগুলি পুড়িয়ে দেবে এবং তাদের দেবতাদের মূর্ত্তিগুলো ভেঙ্গে দেবে| এই ভাবে তোমরা অবশ্যই সেই স্থান থেকে তাদের নাম লোপ করে দেবে| 4 “ঐ সমস্ত লোকরা য়েভাবে তাদের দেবতাদের পূজা করে, সেইভাবে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপাসনা অবশ্যই করবে না| 5 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পরিবারগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে এক বিশেষ স্থান পছন্দ করবেন| প্রভু তাঁর নাম সেখানে রাখবেন| সেটিই হবে তাঁর নিবাস স্থান| তোমরা অবশ্যই তাঁর উপাসনার জন্য সেই স্থানে যাবে| 6 সেখানে তোমরা অবশ্যই তোমাদের হোমবলির নৈবেদ্য, তোমাদের উত্সর্গের জিনিসপত্র, তোমাদের শস্যের এবং পশুর এক দশমাংশ, তোমাদের বিশেষ উপহারসমুহ, য়ে কোনোও উপহার সামগ্রী য়েটা তোমরা প্রভুর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলে, য়ে কোনোও বিশেষ উপহার যা তোমরা দিতে চাও, এবং তোমাদের পশুপালের মধ্যে প্রথমজাত পশুদের নিয়ে আসবে| 7 সেই স্থানে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপস্থিতির সামনে আহার করবে এবং য়ে সব উত্তম বিষয় পরিশ্রম করে লাভ করেছ তা তুমি এবং তোমার পরিবারগুলির সাথে ভাগ করে নেবে, কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের আশীর্বাদ করেছেন এবং তোমাদের ঐ সমস্ত ভালো জিনিসগুলো দিয়েছেন| 8 “আমরা য়ে ভাবে উপাসনা করে আসছিলাম সেইভাবে তোমরা অবশ্যই তোমাদের উপাসনা চালিয়ে যাবে না| এখন পর্য়ন্ত আমরা যা ভাল মনে করেছি সেইভাবেই ঈশ্বরের উপাসনা করে আসছিলাম| 9 কারণ প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন সেই বিশ্রামস্থানে তোমরা এখনও প্রবেশ কর নি| 10 কিন্তু তোমরা শীঘ্রই যর্দন নদী অতিক্রম করে যাবে এবং সেই দেশে বাস করবে| সেই দেশে প্রভু তোমাদের সমস্ত শত্রুদের কাছ থেকে তোমাদের বিশ্রাম দেবেন আর তোমরা বিপদমুক্ত হবে| 11 এর পর প্রভু তাঁর বিশেষ স্থান পছন্দ করবেন, সেই স্থানে প্রভু তাঁর নাম স্থাপন করবেন এবং আমি তোমাদের য়ে আজ্ঞা করেছিলাম সেই সমস্ত জিনিসপত্র তোমরা অবশ্যই সেই স্থানে নিয়ে আসবে| তোমাদের হোমবলির নৈবেদ্য, উত্সর্গের জিনিসপত্র, বিশেষ উপহার সামগ্রী, য়ে কোনও উপহার যা তোমরা তোমাদের শস্যের এবং পশুর এক দশমাংশ প্রভুর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলে এবং তোমাদের পশুশালার প্রথমজাত পশুদের নিয়ে এসো| 12 তোমাদের সমস্ত লোকদের নিয়ে সেই স্থানে এস| তোমাদের সন্তানদের, তোমাদের পরিচারকদের এবং তোমাদের শহরে বসবাসকারী লেবীয়দের নিয়ে এসো| (কারণ তোমাদের মধ্যে এই সমস্ত লেবীয়দের নিজেদের জমির কোনো অংশ বা অধিকার নেই|) তোমরা সেখানে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, উপস্থিতির সামনে সবার সাথে আনন্দ উপভোগ করো| 13 সাবধান, য়ে কোন স্থান দেখলেই সেখানে তোমাদের হোমবলির নৈবেদ্য উত্সর্গ করো না| 14 তোমাদের পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে প্রভু তাঁর য়ে বিশেষ স্থান পছন্দ করবেন, কেবলমাত্র সেই স্থানেই তোমরা হোমবলির নৈবেদ্যসমুহ এবং অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী উত্সর্গ করো এবং আমি যা আদেশ করছি সেগুলোই পালন করো| 15 “তোমরা যেখানেই থাকো, তোমরা য়ে কোনও পশুদের, য়েমন কৃষ্ণসার এবং হরিণ হত্যা করতে পার এবং সেগুলো খেতে পারো| তোমরা যতটা চাও সেই পরিমাণ মাংস তোমরা আহার করতে পার, য়ে পরিমাণ প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের দেন| য়ে কোনোও ব্যক্তি এই মাংস খেতে পারে - লোকদের মধ্যে যারা শুচি এবং অশুচি| 16 কিন্তু তোমরা অবশ্যই রক্ত খাবে না| ঠিক জলের মতোই রক্তটাকে তোমরা মাটিতে ঢেলে ফেলবে| 17 “তোমরা যেখানে বাস করছ সেই স্থানে এই জিনিসগুলি অবশ্যই ভক্ষণ করবে না; য়েমন তোমাদের শস্যের এক দশমাংশ, তোমাদের নতুন দ্রাক্ষারস এবং তেল, তোমাদের পশুপালের অথবা গবাদিপশুর প্রথমজাত পশুদের, য়ে কোনোও উপহার য়েটা তোমরা ঈশ্বরের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলে, য়ে কোনও বিশেষ উপহারসামগ্রী যা তোমরা ঈশ্বরের কাছে মানত করেছ অথবা ঈশ্বরের জন্য সরিয়ে রাখা অন্যান্য য়ে কোনোও উপহারসামগ্রী| 18 তোমরা অবশ্যই ঐ সমস্ত নৈবেদ্য কেবলমাত্র সেই স্থানেই আহার করবে যেখানে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, উপস্থিতি থাকবে এবং সেই বিশেষ স্থানে, য়েটি প্রভু তোমাদের ঈশ্বর পছন্দ করবেন| তোমরা অবশ্যই সেই স্থানে যাবে এবং তোমাদের পুত্রদের, তোমাদের কন্যাদের, তোমাদের সমস্ত পরিচারকদের এবং তোমাদের শহরে বসবাসকারী লেবীয়দের সঙ্গে একত্রে আহার করবে| সেখানে তোমরা নিজেরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, উপস্থিতির সামনে আনন্দ উপভোগ করো| তোমরা য়ে জন্য কাজ করেছিলে, সেই জিনিসগুলোকে সেখানে উপভোগ করো| 19 কিন্তু সাবধান, তোমরা সবসময়ই এই সমস্ত খাদ্যদ্রব্য লেবীয়দের সঙ্গে ভাগ করে নেবে| তোমরা যতদিন তোমাদের দেশে থাকবে, ততদিন পর্য়ন্ত তোমরা এ কাজ করবে| 20 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর যখন তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে দেশের সীমা বিস্তার করবেন; সেই সময় তিনি তাঁর নাম স্থাপনার্থে য়ে স্থানটি নির্বাচিত করেছেন তা থেকে তোমরা হয়তো অনেক দূরে বসবাস করতে পার| যদি এটি অনেক দূরে হয় এবং তোমরা মাংসের জন্য ক্ষুধার্ত হও তবে প্রভু তোমাদের যা দিয়েছেন সেই পশুপাল থেকে তোমরা য়ে কোনো পশুকে হত্যা করতে পার| আমি তোমাদের য়ে আদেশ করেছি সেই ভাবেই এটি করো| তোমরা তোমাদের শহরে এই মাংস যত ইচ্ছা তত খেতে পার| 21 22 তোমরা য়েভাবে কৃষ্ণসার অথবা হরিণের মাংস খাও সেভাবেই তোমরা এই মাংস খেতে পার| শুচি বা অশুচি য়ে কোন ব্যক্তিই তা খেতে পারে| 23 কিন্তু সাবধান, রক্ত খেও না, কারণ রক্তের মধ্যেই জীবনের অস্তিত্ব| তোমরা সেই মাংস কখনই খাবে না যতক্ষণ পর্য়ন্ত তার মধ্যে প্রাণের অস্তিত্ব আছে| 24 রক্ত খেও না| জলের মতোই মাটির ওপরে রক্ত ঢেলে ফেলে দেবে| 25 কাজেই রক্ত খেও না. প্রভুর দৃষ্টিতে যা ন্যায় সেই কাজগুলো করলে তোমাদের এবং তোমাদের উত্তরপুরুষদের মঙ্গল হবে| 26 “তোমাদের পবিত্র উপহার এবং যদি তোমরা ঈশ্বরকে বিশেষ কিছু দেবে বলে মানত করে থাক, তাহলে তা নিয়ে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, মনোনীত স্থানে যাবে| 27 সেই জায়গায় তোমরা অবশ্যই তোমাদের হোমবলি উত্সর্গ করবে| তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের বেদীর ওপরে তোমাদের হোমবলির মাংস এবং রক্ত উভয়ই উত্সর্গ করবে| তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের বেদীর ওপরে রক্ত ঢালবে| এরপর তোমরা মাংস খেতে পার| 28 আমি তোমাদের য়ে আদেশগুলো দিলাম সেগুলো মেনে চলার ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকবে| প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের চোখে যা ভাল এবং ন্যায় সেই কাজগুলি করলে তোমাদের এবং তোমাদের উত্তরপুরুষদের চিরদিন মঙ্গল হবে| 29 “তোমরা য়ে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেই দেশের অধিবাসীদের প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, ধ্বংস করবেন, সুতরাং তোমরা ঐ সমস্ত অধিবাসীদের সেই দেশ থেকে বেরিয়ে য়েতে বাধ্য করে সেখানে বাস করবে| 30 তখন সাবধান, তোমাদের চোখের সামনে তাদের ধ্বংসের পর তাদের অনুকরণ করে ফাঁদে পড়ো না| সাবধান, সাহায্যের জন্য ঐ সমস্ত মূর্ত্তির অন্বেষণ করো না, কখনও খোঁজ নিও না, ‘ঐ সমস্ত লোকরা ঐ দেবতাদের কিভাবে পূজা করত, পাছে বল আমিও একইভাবে পূজা করব!’ 31 সেই ভাবে তোমরা তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের, উপাসনা করো না| কারণ প্রভু য়েগুলো ঘৃণা করেন সেই সবরকম খারাপ কাজই ঐ সমস্ত লোকরা করে| কারণ তারা দেবতাদের কাছে বলি হিসেবে তাদের সন্তানদের পোড়ায! 32 “আমি তোমাদের য়ে আদেশগুলো করলাম সেগুলো পালন করার ব্যাপারে তোমরা খুব সতর্ক হবে| আমি তোমাদের যা বললাম সেগুলোর সঙ্গে কোনো কিছু য়োগ করো না এবং কোনো কিছু বাদও দিও না|
1 “কোন ভাববাদী বা স্বপ্নদর্শক, য়ে স্বপ্ন ব্যাখ্যা করে, তোমাদের কাছে এসে কোনো চিহ্ন বা অলৌকিক কিছু দেখাতে পারে| 2 আর সে তোমাদের য়ে চিহ্ন বা অলৌকিক কিছুর কথা বলেছিল তা সফল হলে সে হয়তো তোমাদের বলতে পারে, ‘এস আমরা অন্যান্য দেবতাদের (য়ে সব দেবতাদের তোমরা জান না|) অনুসরণ করি এবং সেবা করি|’ 3 সেই স্বপ্নদর্শকের কথা শুনো না| কেন? কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পরীক্ষা করছেন| প্রভু জানতে চাইছেন য়ে, তোমরা তাঁকে তোমাদের সমস্ত হৃদয় এবং তোমাদের সমস্ত প্রাণ দিয়ে ভালোবাস কিনা| 4 তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরকে, অনুসরণ করবে! তাঁকে শ্রদ্ধা করবে| প্রভুর আজ্ঞাগুলো মেনে চলবে এবং তিনি তোমাদের যা বলেন সেগুলো করবে| প্রভুর সেবা করো এবং তাঁকে কখনও পরিত্যাগ করো না| 5 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই সেই ভাববাদী অথবা স্বপ্নদর্শককে হত্যা করবে| কারণ সে তোমাদের সেই প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারণ করতে বলেছিল য়ে প্রভু তোমাদের মিশর দেশ থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন এবং দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়েভাবে জীবনযাপন করার জন্য আজ্ঞা করেছিলেন সেই লোকটি তোমাদের সেই জীবন থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল| সুতরাং তোমাদের লোকদের মধ্য থেকে সেই মন্দকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে হত্যা করবে| 6 “তোমাদের ঘনিষ্ঠ কেউ অন্য দেবতাদের পূজা করার জন্য তোমাদের গোপনে পরামর্শ দিতে পারে| সে তোমাদের ভাই হতে পারে, তোমাদের পুত্র হতে পারে, তোমাদের কন্যা হতে পারে, যাকে ভালোবাসো সেই স্ত্রী হতে পারে অথবা তোমাদের ঘনিষ্ঠতম বন্ধুও হতে পারে| সেই লোকটি বলতে পারে, ‘এবার আমরা যাই এবং অন্যান্য দেবতাদের সেবা করি|’ (এরাই হল সেই দেবতা যাদের তোমরা জানতে না এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরাও কোন দিন জানত না| 7 এরাই হল তোমাদের চারপাশের অন্যান্য দেশের বসবাসকারী লোকদের কারোর কাছের বা কারোর দূরের দেবতা|) 8 তোমরা সেই ব্যক্তির সঙ্গে অবশ্যই একমত হবে না| তার কথা শুনবে না| তার জন্য দুঃখিত হবে না| তাকে ছেড়ে দিও না এবং তাকে রক্ষা করো না| 9 না! তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে হত্যা করবে| তোমরা অবশ্যই তাকে পাথর মেরে হত্যা করবে| তুমিই হবে প্রথম ব্যক্তি য়ে পাথর তুলবে এবং তার দিকে ছুঁড়ে মারবে| এরপর সমস্ত লোকরা তাকে হত্যা করার জন্য অবশ্যই পাথর ছুঁড়বে| কারণ সেই ব্যক্তি তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের, কাছ থেকে তোমাদের দূরে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল; অথচ সেই মিশর দেশ থেকে প্রভুই তোমাদের দাসত্ব থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন| 10 11 তখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা শুনতে পাবে এবং ভয় পাবে এবং তারা আর কখনও ঐ সমস্ত খারাপ কাজ করবে না| 12 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের বাস করার জন্যে য়ে শহরগুলো দিয়েছেন, সেই শহরগুলোর মধ্যে কোনো একটির সম্পর্কে যদি এমন খবর পাও 13 য়ে তোমাদের মধ্যে থেকে কিছু পাষণ্ড লোক শহরের অন্যান্য লোকদের এই বলে ঈশ্বরবিমুখ করার জন্য প্ররোচিত করছে য়ে, ‘এবার এস আমরা এমন দেবতাদের সেবা করি যাদের তোমরা আগে কখনও জানতে না|’ 14 তখন এই ধরণের কোনো খবর সত্য কিনা তা জানার জন্য তোমরা অবশ্যই যথাসাধ্য চেষ্টা করবে| যদি তোমরা জানতে পারো য়ে এটি সত্য, যদি তোমরা প্রমাণ করতে পার য়ে সে রকম সাংঘাতিক ঘটনা সত্যই ঘটেছিল 15 তাহলে তোমরা অবশ্যই সেই শহরের লোকদের সকলকে তরবারি দ্বারা হত্যা করবে এবং তোমরা তাদের সমস্ত পশুদেরও হত্যা করবে| তোমরা অবশ্যই সেই শহরটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে| 16 এরপর তোমরা অবশ্যই সমস্ত মূল্য়বান জিনিসপত্র এক জায়গায় জড়ো করবে এবং সেগুলোকে শহরের কেন্দ্রস্থলে নিয়ে যাবে| তারপর শহরটিকে ঐ সমস্ত জিনিসপত্র সমেত পুড়িয়ে ফেলবে| এটি হবে তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের, কাছে হোমবলির নৈবেদ্য| শহরটি য়েন অবশ্যই চিরকালের মতো পাথরের স্তুপে পরিণত হয়| সেই শহরটিকে য়েন অবশ্যই আবার তৈরী করা না হয়| 17 সেই শহরের প্রতিটি জিনিস ধ্বংস করার জন্য ঈশ্বরকে দান করতে হবে, সুতরাং তোমরা ঐ জিনিসগুলোর কোনটিই নিজেদের জন্য রাখবে না| তোমরা যদি এই আদেশ মেনে চলো, তাহলে প্রভু তোমাদের প্রতি আর এতো ক্রুদ্ধ হবেন না| প্রভু তোমাদের প্রতি কৃপা ও করুণা করবেন| তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই অনুযায়ী তিনি তোমাদের জাতিকে বৃহত্তর করবেন| 18 এই রকমটাই হবে যদি তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, কথা শোনো, তাঁর সমস্ত আজ্ঞাগুলো, য়েগুলো আজ আমি তোমাদের দিলাম, সেগুলো সব যদি মেনে চলো এবং প্রভুর দৃষ্টিতে যথার্থ আচরণ করো|
1 “তোমরা হলে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, সন্তান| যখন কেউ মারা যায় তখন তোমরা কোনোভাবেই তোমাদের নিজেদের কাটাছেঁড়া করবে না অথবা মাথা কামিয়ে তোমাদের দুঃখ প্রকাশ করবে না| 2 কেন? কারণ তোমরা অন্যান্য লোকদের থেকে আলাদা| তোমরা হলে প্রভুর বিশেষ লোকজন| পৃথিবীর সমস্ত লোকর মধ্য থেকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাঁর বিশেষ লোক হিসেবে তোমাদেরই নির্বাচিত করেছিলেন| 3 “প্রভু য়েগুলো ঘৃণা করেন সেগুলো তোমরা খেও না| 4 তোমরা এই সমস্ত পশুদের খেতে পার - গরু, মেষ, ছাগল, 5 হরিণ, বারশিঙ্গা হরিণ, ছোট হরিণী, বুনো মেষ, বুনো ছাগল, কৃষ্ণসার হরিণ এবং পার্বত্য মেষ| 6 য়ে কোনোও পশু যাদের পাযে দুভাগে বিভক্ত খুর আছে এবং যারা জাবর কাটে তাদের তোমরা খেতে পারো| 7 কিন্তু তোমরা উট, খরগোশ অথবা পাহাড়ী শ্বাফন পশুদের খেও না| এই সমস্ত পশুরা জাবর কাটে কিন্তু তাদের পাযে বিভক্ত খুর নেই, সুতরাং ঐ সমস্ত পশুরা শুচি খাদ্য হিসেবে তোমাদের কাছে গ্রহণয়োগ্য নয়| 8 তোমরা অবশ্যই শুয়োর খাবে না| তাদের পাযের খুরগুলো বিভক্ত, কিন্তু তারা জাবর কাটে না| সুতরাং খাদ্য হিসেবে শুযোরও তোমাদের গ্রহণয়োগ্য নয়| শুযোরের কোনো মাংস খাবে না| এমনকি শুযোরের মৃত শরীর স্পর্শ করবে না| 9 “পাখনা এবং আঁশ আছে এরকম য়ে কোনো রকম মাছ তোমরা খেতে পারো| 10 কিন্তু জলে বসবাসকারী জীবন্ত কোনো কিছু, যাদের পাখনা অথবা আঁশ নেই সেগুলো তোমরা খেও না| এগুলো তোমাদের পক্ষে শুচি খাদ্য নয়| 11 “তোমরা য়ে কোনোও প্রকারের শুচি পাখী খেতে পারো| 12 কিন্তু এই পাখীগুলো খেও না: ঈগল, শকুন, বাজ, 13 লাল চিল, বাজ পাখি এবং য়ে কোনো প্রকার চিল, 14 য়ে কোন প্রকার কাক, 15 শিং ওয়ালা পেঁচা, লক্ষী পেঁচা, শঙ্খ চিল, য়ে কোনোও রকম বাজপাখি, 16 ছোট পেঁচা, বড় পেঁচা, সাদা পেঁচা, 17 মরুভূমি অঞ্চলের পেঁচা, সামুদ্রিক ঈগল, লিপ্তপাদ সামুদ্রিক পাখী, 18 সারস, সারস জাতীয অন্যান্য য়ে কোনোও পাখী, ঝুঁটিওয়ালা পাখী অথবা বাদুড়| 19 “ডানাওয়ালা সমস্ত পোকারাই অশুচি, সুতরাং তাদের খেও না| 20 কিন্তু তোমরা য়ে কোনও প্রকার শুচি পাখী খেতে পার| 21 “নিজের থেকে মারা গেছে এমন কোনোও পশু তোমরা খেও না| তোমরা মৃত পশু খাবার জন্য তোমাদের শহরের কোনো বিদেশীকে দিতে পারো| অথবা তোমরা তা তার কাছে বিক্রি করতে পারো| কিন্তু তোমরা নিজেরা অবশ্যই কোনো মৃত পশু খাবে না, কারণ তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের| তোমরা তাঁর বিশেষ লোক|“একটি ছাগশিশুকে তারই মাযের দুধে রান্না কোরো না| 22 “তোমাদের জমিতে য়ে ফসল হয়, প্রতি বছর তার দশ ভাগের এক ভাগ আলাদা করে রাখবে| 23 এরপর প্রভু য়ে জায়গাটিকে তাঁর বিশেষ বাসস্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, সেখানে তোমরা যাবে| সেই স্থানে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপস্থিতিতে তোমাদের দানা শস্যের, তোমাদের নতুন দ্রাক্ষারসের, তোমাদের তেলের এবং তোমাদের পশুর দলের মধ্যে প্রথম জাত পশুদের এক দশমাংশ ভোজন করবে| এই প্রকারে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সম্মান দেখানোর কথা সব সময় মনে রাখবে| 24 কিন্তু জায়গাটা যদি দূরে হয় তবে তোমাদের শস্যের দশ ভাগের এক ভাগ তোমাদের পক্ষে বহন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে| সুতরাং প্রভু যখন তোমাকে আশীর্বাদ করেন তখন ঈশ্বর নিজের নাম স্থাপনের জন্য য়ে স্থান মনোনীত করেছেন তা দূরে হলে 25 তোমাদের শস্যের সেই অংশটুকু বিক্রি করে য়ে টাকা পাবে তা সঙ্গে নাও এবং ঈশ্বর য়ে জায়গা মনোনীত করেছেন সেই বিশেষ জায়গায় যাও| 26 সেই টাকা দিয়ে তোমরা যা চাও তা কেনো - গরু, মেষ, দ্রাক্ষারস অথবা সুরা অথবা য়ে কোনো রকম খাদ্য| এর পর সেই জায়গায় প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের সঙ্গে তোমরা এবং তোমাদের পরিবারের লোকরা অবশ্যই খাবে এবং আনন্দ উপভোগ করবে| 27 কিন্তু তোমাদের শহরে বসবাসকারী লেবীয়দের ভুলো না| তোমরা তাদের সঙ্গে তোমাদের খাদ্য ভাগ করে নেবে, কারণ তোমাদের মতো তাদের জমির কোনো অংশ নেই| 28 “প্রতি তিন বছরের শেষে তোমরা অবশ্যই সেই বছরের সংগৃহীত ফসলের এক দশমাংশ সংগ্রহ করবে| তোমাদের শহরগুলোতে এই খাদ্য জমা করে রেখো| 29 এই খাদ্য লেবীয় লোকদের জন্য কারণ তাদের নিজেদের কোনো জমি নেই| এই খাদ্য তোমাদের শহরে যাদের খাদ্যের প্রযোজন তাদেরও জন্য| সেই খাদ্য বিদেশীদের, বিধবাদের এবং অনাথদের জন্য| যদি তোমরা এটি করো তাহলে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সমস্ত কাজে আশীর্বাদ করবেন|
1 “প্রতি সাত বছরের শেষে তোমরা অবশ্যই ঋণ ক্ষমা করবে| 2 তোমরা এই প্রকারে তা করবে: কোন লোক য়ে অপর ইস্রায়েলীয়কে টাকা ধার দিয়েছে, সে অবশ্যই সেই ঋণ ক্ষমা করবে| সে তার প্রতিবেশীকে ঋণ শোধ করতে বাধ্য করবে না, কারণ ঈশ্বরের সম্মানার্থে সেই বছরে দেনা বাতিল করার বছর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে| 3 তোমরা কোন বিদেশীর কাছ থেকে ঋণ আদায করতে পার| কিন্তু আরেকজন ইস্রায়েলীর তোমার কাছে য়ে দেনা আছে সেটা তোমরা অবশ্যই বাতিল করবে| 4 তোমাদের দেশে কোনো গরীব লোক থাকা উচিত্ নয়, কারণ প্রভু তোমাদের য়ে দেশ দিয়েছেন সেই দেশে তোমাদের মহত্ভাবে আশীর্বাদ করবেন| 5 কিন্তু এটা একমাত্র তখনই সম্ভব যদি তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে মেনে চলো| আমি আজ তোমাদের য়েগুলো বললাম সেই আজ্ঞাগুলো মেনে চলার ব্যাপারে তোমরা অবশ্যই সতর্ক থাকবে| 6 তাহলে তিনি য়েরকম প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই মতো তোমাদের আশীর্বাদ করবেন| তখন তোমরা অন্যান্য জাতিকে ঋণ দেবে| কিন্তু অন্যদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার প্রযোজন তোমাদের হবে না| তোমরা বহু জাতিকে শাসন করতে পারবে, কিন্তু ঐ সমস্ত জাতির কেউই তোমাদের শাসন করবে না| 7 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের য়ে দেশ দিয়েছেন, সেখানকার কোন শহরে তোমার কেউ যদি দরিদ্র হয় তবে তুমি অবশ্যই স্বার্থপর হবে না, সেই দরিদ্র ব্যক্তিকে সাহায্য করবে, তাকে অবশ্যই সাহায্য করতে অস্বীকার করবে না| 8 তার সাথে উদারভাবে ভাগ করে নিতে তোমরা অবশ্যই রাজি হবে এবং সেই লোকটির যা কিছু প্রযোজন সব কিছু তোমরা তাকে ধার দেবে| 9 “সপ্তম বছর, দেনা বাতিল করার বছর এগিয়ে এসেছে বলে, শুধু মাত্র এই কারণেই কাউকে সাহায্য করতে অস্বীকার কোরো না| এই ধরণের কোন খারাপ চিন্তা তোমাদের মনে প্রবেশ করতে দিও না| য়ে ব্যক্তির সাহায্যের প্রযোজন, তার সম্বন্ধে তোমরা অবশ্যই কোনো খারাপ মনোভাব পোষণ করবে না| তোমরা অবশ্যই তাকে সাহায্য করতে অস্বীকার করবে না| তোমরা যদি সেই গরীব লোকটিকে সাহায্য না করো, তাহলে সে প্রভুর কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে এবং প্রভু তোমাদের এই পাপের জন্য অভিযুক্ত করবেন| 10 “তোমরা তোমাদের যথাসাধ্য সেই গরীব লোকটিকে দেবে| তাকে দেওয়ার সময় মনে কোনো কুচিন্তা রেখো না| কেন? কারণ এই ভালো কাজ করার জন্য প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের আশীর্বাদ করবেন| তোমাদের সমস্ত কাজে এবং তোমরা যা করো তার প্রত্যেকটিতে তিনি তোমাদের আশীর্বাদ করবেন| 11 তোমাদের দেশে সবসময়ই গরীব লোক থাকবে; সেই কারণে আমি তোমাদের আদেশ করছি তোমরা অবশ্যই তোমাদের ভাইদের এবং তোমাদের দেশে য়ে দরিদ্র লোকদের সাহায্যের প্রযোজন তাদের মুক্ত হস্তে সাহায্য করবে| 12 “ক্রীতদাস হিসেবে তোমাদের সেবা করার জন্য যদি কোনো হিব্রু পুরুষ অথবা স্ত্রীলোক তোমাদের কাছে নিজেকে বিক্রি করে তবে তোমরা তাকে ছ’বছর পর্য়ন্ত ক্রীতদাস হিসেবে রাখতে পার; কিন্তু সপ্তম বছরে তোমরা অবশ্যই তাকে ছেড়ে দেবে| 13 কিন্তু যখন তোমরা তোমাদের ক্রীতদাসকে স্বাধীন করছ, তখন তাকে খালি হাতে পাঠিও না| 14 তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে মুক্ত হস্তে তোমাদের পশু, দানাশস্য এবং দ্রাক্ষারস দেবে| প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়েভাবে আশীর্বাদ করেছেন সেই ভাবেই তোমরা তোমাদের ক্রীতদাসকে দেবে| 15 মনে রাখবে, তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে এবং প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের মুক্ত করেছিলেন| সেই কারণেই আমি আজ তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি| 16 “কিন্তু সেই ক্রীতদাস যদি বলে, ‘আমি তোমাদের ছেড়ে যাবো না|’ সে তোমাকে এবং তোমাদের পরিবারকে ভালোবাসে এবং তোমাদের সঙ্গে সে ভালোভাবে আছে বলে এটা বলতে পারে| 17 এরকম হলে তোমরা সেই ক্রীতদাসকে তোমাদের দরজায কান রাখতে বলো এবং একটি ধারালো য়ন্ত্রের সাহায্যে তার কানে ফুটো করো| এর থেকেই বোঝা যাবে য়ে সে চিরকালের জন্য তোমাদেরই ক্রীতদাস| য়ে ক্রীতদাসী তোমাদের সঙ্গে থাকতে চায তার জন্যও এই ব্যবস্থা| 18 “ক্রীতদাসদের মুক্ত করে দেওয়ার ব্যাপারে মন কঠিন কোরো না| মনে রাখবে, কোনো ভাড়া করা লোককে তোমাদের য়ে টাকা দিতে হত তার অর্ধেক টাকায সে ছ’বছর তোমাদের সেবা করেছে| আর তাহলে তোমাদের প্রত্যেক কাজে প্রভু ঈশ্বর তোমাদের আশীর্বাদ করবেন| 19 “তোমাদের পশুপালের সমস্ত প্রথমজাত পুরুষ পশুদের তোমরা অবশ্যই প্রভুর উদ্দেশ্যে পৃথক করবে| তোমাদের কাজে ঐ পশুদের কাউকে ব্যবহার করবে না এবং ঐ সমস্ত মেষের থেকে কোনো পশম ছাঁটবে না| 20 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, য়ে স্থান পছন্দ করবেন প্রত্যেক বছর সেই জায়গায় তোমরা ঐ সমস্ত পশুদের নিয়ে আসবে| সেখানে প্রভুর উপস্থিতির সামনে তোমরা এবং তোমাদের পরিবারের লোকরা ঐ সমস্ত পশুদের খাবে| 21 “কিন্তু যদি কোনো পশুর কোনো খুঁত থাকে - যদি খোঁড়া হয় অথবা অন্ধ অথবা অন্য য়ে কোনরকম খুঁত যদি থাকে, তাহলে তোমরা অবশ্যই সেই পশুটিকে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে উত্সর্গ করবে না| 22 কিন্তু তোমরা বাড়ীতে সেই পশুর মাংস খেতে পারো| য়ে কোনোও লোকই এটি খেতে পারে - সে শুচিই হোক বা অশুচি হোক| এই মাংস খাওয়ার নিয়ম কৃষ্ণসার এবং হরিণের মাংস খাওয়ার মতো| 23 কিন্তু তোমরা পশুর রক্ত অবশ্যই খাবে না| তোমরা জলের মতোই সেই রক্ত মাটিতে ঢেলে দেবে|
1 “তোমরা আবীব মাসকে মনে রাখবে| সেই সময় তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে সম্মান দেখানোর জন্যে নিস্তারপর্ব উদযাপন করবে, কারণ সেই মাসে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর মিশর থেকে তোমাদের রাত্রে বের করে নিয়ে এসেছিলেন| 2 বাস করার জন্য য়ে জায়গা প্রভু পছন্দ করবেন তোমরা অবশ্যই সেই জায়গায় যাবে| সেখানে তোমাদের পশুপাল থেকে পশু নিয়ে তা তোমরা নিস্তারপর্বের বলি হিসাবে প্রভুকে উত্সর্গ করবে| 3 এই বলির সঙ্গে খামিরযুক্ত কোন রুটি খাবে না| তোমরা সাতদিন খামিরবিহীন রুটি খাবে| এই রুটিকে বলা হয় ‘দুঃখাবস্থার রুটি|’ মিশরে তোমাদের য়ে সব সমস্যা ছিল সেগুলো মনে করতে এটি সাহায্য করবে| মনে করে দেখ কতো তাড়াতাড়ি তোমাদের দেশ ত্যাগ করতে হয়েছিল| মিশর থেকে য়েদিন তোমরা বেরিয়ে এসেছিলে সে দিনের কথা তোমরা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন মনে রাখবে| 4 দেশের কোথাও কোনও বাড়িতে সাত দিন ধরে অবশ্যই খামির থাকবে না| এছাড়া প্রথম দিন সন্ধ্যাবেলায় তোমরা যত মাংস উত্সর্গ করবে সেগুলো অবশ্যই সকালের আগে খেযে নিতে হবে| 5 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে শহরগুলো দিয়েছেন, সেখানে কোথাও তোমরা অবশ্যই নিস্তারপর্বের পশু উত্সর্গ করবে না| 6 তোমরা কেবলমাত্র সেই স্থানেই নিস্তারপর্বের পশু উত্সর্গ করবে য়েটিকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তাঁর নাম বাস করার জন্য মনোনীত করবেন| য়ে সময় সূর্য় অস্ত যায়, সেই সন্ধ্যাবেলায় তোমরা অবশ্যই নিস্তাপর্বের পশু উত্সর্গ করবে| ঈশ্বর য়ে ঋতুতে তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন সেই ঋতুতেই এটা করবে| 7 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, য়ে জায়গা পছন্দ করবেন সেই জায়গায় তোমরা অবশ্যই নিস্তারপর্বের মাংস রান্না করবে এবং সেটি খাবে| এরপর সকালে তোমরা বাড়ীতে ফিরে য়েতে পার| 8 এই দিন তোমরা নিশ্চয়ই খামিরবিহীন রুটি খাবে| সপ্তম দিনে তোমরা অবশ্যই কোনো কাজ করবে না| এই দিন প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে সম্মান দেখানোর জন্য লোকরা এক বিশেষ সভায এসে একত্রিত হবে| 9 “য়েদিন থেকে তোমরা শস্য কাটা শুরু করেছিলে সেই দিন থেকে তোমরা সাত সপ্তাহ গোনো| 10 তারপর প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের জন্য সপ্তাহের উত্সব উদযাপন করো| তোমরা যা নিয়ে আসতে চাও সেইরকম কোনো বিশেষ উপহার নিয়ে এসে এটি করো| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের কতখানি আশীর্বাদ করেছেন সেটা চিন্তা করে স্থির করবে তোমরা কতটা দেবে| 11 প্রভু তাঁর বিশেষ বাড়ীর জন্য য়ে জায়গা পছন্দ করবেন সেখানে যাও| সেখানে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে তোমরা এবং তোমাদের লোকরা একত্রে আনন্দ উপভোগ করবে| তোমাদের সমস্ত লোককে তোমাদের সঙ্গে নাও - তোমাদের পুত্রদের, তোমাদের কন্যাদের এবং তোমাদের সমস্ত সেবকদের| এছাড়া তোমাদের শহরগুলোতে বসবাসকারী লেবীয়দের, বিদেশীদের, অনাথদের এবং বিধবাদেরও নিয়ে এসো| 12 মনে রাখবে তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে| সুতরাং এই বিধিগুলো মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক থাকবে| 13 “শস্য মাড়ানোর জায়গা থেকে শস্য সংগ্রহ করার পর এবং দ্রাক্ষা মাড়ার জায়গা থেকে দ্রাক্ষারস সংগ্রহ করার সাতদিন পরে তোমরা অবশ্যই কুটির উত্সব উদযাপন করবে| 14 এই উত্সবে তোমরা সকলে আনন্দ উপভোগ করো - তোমরা, তোমাদের ছেলেরা, তোমাদের মেয়েরা, তোমাদের সমস্ত সেবকরা এবং তোমাদের শহরে বসবাসকারী লেবীয়রা, বিদেশীরা, অনাথরা এবং বিধবারা| 15 প্রভু য়ে স্থান পছন্দ করবেন সেই বিশেষ স্থানে তোমরা সাতদিন ধরে এই উত্সব উদযাপন করবে| তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য তোমরা এটি কর| শস্য সংগ্রহ এবং সমস্ত কাজে য়েহেতু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের আশীর্বাদ করবেন তাই তোমরা খুব আনন্দ করবে| 16 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, য়ে স্থান পছন্দ করবেন সেই বিশেষ স্থানে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে বছরে তিনবার তোমাদের পুরুষরা অবশ্যই আসবে| খামিরবিহীন রুটির তৈরীর উত্সব এবং কুটির উত্সবের জন্যও তারা আসবে| প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসা প্রত্যেক ব্যক্তি অবশ্যই উপহার নিয়ে আসবে, খালি হাতে আসবে না| 17 প্রত্যেক ব্যক্তি যতটা পারবে ততটা অবশ্যই দেবে| প্রভু তাকে কতটা দিয়েছেন সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সে স্থির করবে সে ঈশ্বরকে কতটা দেবে| 18 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, য়ে শহরগুলো তোমাদের দিতে চলেছেন তার প্রত্যেকটিতে তোমরা অবশ্যই বিচারকদের এবং উচ্চপদাধিকারী ব্যক্তিদের নিয়োগ করবে| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী অবশ্যই এটি করবে এবং লোকদের বিচারের সময় এরা অবশ্যই পক্ষপাতহীন হবে| 19 তোমরা অবশ্যই অন্যায় বিচার করবে না এবং সব সময় পক্ষপাতহীন হবে| রায দেওয়ার সময় মন পরিবর্তনের জন্য কারও কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করবে না| অর্থ অনেক জ্ঞানী লোককেও অন্ধ করে দেয় এবং একজন ভালো লোক যা বলবে তাও পরিবর্তন করে দেয়| 20 সততা এবং পক্ষপাতহীনতা! সব সময় সত্ এবং পক্ষপাতহীন থাকার জন্য তোমাদের অবশ্যই খুব কঠোর চেষ্টা করতে হবে! তাহলেই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশে তোমরা থাকতে পারবে এবং রাখতে পারবে| 21 “তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের জন্য নির্মিত বেদীর পাশে দেবী আশেরাকে সম্মান করার জন্য কোনোও কাঠের স্তম্ভ স্থাপন করবে না| 22 এবং মূর্ত্তি পূজার জন্য তোমরা কোনোও বিশেষ পাথর স্থাপন করবে না| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, ঐ জিনিসগুলোকে ঘৃণা করেন|
1 “তোমরা তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের কাছে খুঁত আছে এমন কোনও গরু বা মেষ বলি দেবে না| কেন? কারণ তোমাদের প্রভু ঈশ্বর এটিকে ঘৃণা করেন! 2 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন সেখানে তোমরা তোমাদের গোষ্ঠীর এমন কোন পুরুষ অথবা স্ত্রীলোককে পেতে পার য়ে প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছে বা প্রভুর নিয়ম ভঙ্গ করেছে 3 এবং অন্যান্য দেবতার পূজা করেছে, এও হতে পারে য়ে তারা সূর্য়, চন্দ্র অথবা নক্ষত্রের পূজা করেছে| এগুলো প্রভুর আজ্ঞার বিরুদ্ধে যা আমি তোমাদের দিয়েছিলাম| 4 যদি তোমরা এই ধরণের কোনো খবর শোনো, তাহলে তোমরা অবশ্যই যত্ন সহকারে খোঁজ খবর নেবে| এই রকম সাংঘাতিক ঘটনা ইস্রায়েলে যদি সত্য়িই ঘটে এবং যদি তার সত্যতা সম্পর্কে তোমরা নিশ্চিত হও 5 তাহলে য়ে ব্যক্তি সেই খারাপ কাজ করেছিল তাকে তোমরা অবশ্যই শাস্তি দেবে| শহরের দরজার কাছে কোনো প্রকাশ্য রাস্তার সেই পুরুষ অথবা স্ত্রীলোককে তোমরা অবশ্যই নিয়ে যাবে এবং তাদের পাথর দিয়ে হত্যা করবে| 6 কিন্তু যদি কেবল মাত্র একজন সাক্ষী বলে য়ে সেই ব্যক্তি খারাপ কাজ করেছে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে কখনই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত্ নয়| কিন্তু যদি দুজন অথবা তিনজন সাক্ষী বলে য়ে এটি সত্য়ি, তাহলে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই হত্যা করা উচিত্| 7 সেই ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য সাক্ষীর অবশ্যই প্রথমে পাথর ছুঁড়বে| এর পর হত্যার কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য অন্যান্য ব্যক্তিরা পাথর ছুঁড়বে| এই ভাবে তোমরা সেই মন্দকে তোমাদের মধ্যে থেকে সরিয়ে দেবে| 8 “এমন কিছু সমস্যা থাকতে পারে যা তোমাদের আদালতের পক্ষে বিচার করা খুবই শক্ত| এটি কোন হত্যার ঘটনাও হতে পারে, অথবা দুজন ব্যক্তির মধ্যে কোন বিতর্কও হতে পারে| অথবা এটি কোন সংঘর্ষও হতে পারে, যাতে কোন একজন আহত হয়েছে| তোমাদের শহরে যখন এইসব ঘটনগুলো নিয়ে বিতর্ক হয়, তখন সেখানে কোনটা ঠিক সেটি তোমাদের বিচারকরা ঠিক করতে সক্ষম নাও হতে পারেন| এক্ষেত্রে তোমাদের প্রভু ঈশ্বর য়ে স্থান পছন্দ করবেন সেই স্থানে তোমরা যাবে| 9 যাজকরা সবাই লেবি পরিবারগোষ্ঠীর| তোমরা অবশ্যই সেই যাজকদের কাছে যাবে যারা লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর এবং বিচারকদের কাছে যাবে যারা সেই সময় কর্তব্যরত| সেই সমস্যা নিয়ে কি করা যায় সেটা তাঁরাই ঠিক করবেন| 10 সেখানে প্রভুর বিশেষ স্থানে তাঁরা তাদের সিদ্ধান্ত তোমাদের জানাবেন| তাঁরা যা কিছু বলবেন, তোমরা অবশ্যই সেটা করবে| তাঁরা তোমাদের যা যা করতে বলবেন, সেগুলো সমস্ত করার ব্যাপারে তোমরা নিশ্চিত থাকবে| 11 তোমরা তাদের সিদ্ধান্ত স্বীকার করবে এবং ঠিক ঠিক ভাবে তাঁদের আদেশ অনুসরণ করবে| তাঁরা তোমাদের যা করতে বলবেন তোমরা সেগুলো ঠিক মতো করবে - তার কোন কিছুর পরিবর্তন করবে না| 12 “কোন লোক যদি সেই সময় তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের সেবায রত কোন বিচারক অথবা যাজকের কথা মেনে চলতে অস্বীকার করে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে তোমরা অবশ্যই শাস্তি দেবে| সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই মরতে হবে| ইস্রায়েল থেকে তোমরা সেই দুষ্ট লোককে অবশ্যই সরাবে| 13 সমস্ত লোক এই শাস্তির কথা শুনবে এবং ভীত হবে এবং এরপর তারা আর জেদী হবে না| 14 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন তোমরা সেই দেশে প্রবেশ করবে| তোমরা সেই দেশ অধিগ্রহণ করে সেখানে বাস করার পর তোমরা বলতে পার, ‘আমাদের চারিদিকের অন্যান্য জাতির মতো আমাদের শাসন করার জন্যও একজন রাজা থাকা উচিত্|’ 15 যখন সেটা ঘটে তখন প্রভু যাকে পছন্দ করবেন নিশ্চিতভাবে তাঁকেই রাজা হিসেবে নির্বাচন করো| তোমাদের ওপরে য়ে রাজা হবে সে অবশ্যই তোমাদের লোকদেরই একজন হবে| তোমরা অবশ্যই কোনো বিদেশীকে তোমাদের রাজা করবে না| 16 রাজা তার নিজের জন্য কখনই প্রচুর ঘোড়া রাখবে না এবং আরও ঘোড়া পাওয়ার জন্য সে কখনই লোকদের মিশরে পাঠাবে না| কেন? কারণ প্রভু তোমাদের বলেছেন, ‘তোমরা সেই পথে কখনই ফিরে যাবে না|’ 17 এছাড়া রাজা কখনও য়েন অনেক স্ত্রী গ্রহণ না করে| কেন? কারণ তাহলে তা তাকে প্রভুর কাছ থেকে সরিয়ে দেবে; এবং রাজা কখনই য়েন নিজেকে রূপো আর সোনায় ধনী করে না তোলে| 18 “এবং রাজা যখন শাসন করতে শুরু করবে তখন একটা বইয়ে সে অবশ্যই বিধিগুলি লিখে রাখবে| যাজকরা এবং লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা য়ে বই রাখে, সেই বই থেকে সে এই প্রতিলিপি লিখবে| 19 রাজা তার কাছে এই বইটি রাখবে এবং সারা জীবন অবশ্যই সেই বইটি পড়বে| কারণ প্রভু, তার ঈশ্বরকে, কিভাবে সম্মান জানাতে হয় তা রাজার শেখা উচিত্ এবং বিধিগুলি পুরোপুরি মেনে চলাও রাজার অবশ্য কর্তব্য| 20 য়েন রাজা এমন না ভাবে য়ে সে তার নিজের লোকদের থেকে ভালো| এবং য়েন সে বিধির পথ থেকে সরে না পড়ে, বরং সে এটিকে ঠিকভাবে অনুসরণ করবে| তাহলেই সেই রাজা এবং তার উত্তরপুরুষরা বহুদিন পর্য়ন্ত ইস্রায়েল রাজ্য় শাসন করবে|
1 “লেবি পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা ইস্রায়েল জমির কোনো অংশ পাবে না| ঐ লোকরা যাজক হিসেবে কাজ করবে| য়ে সকল উত্সর্গীকৃত উপহার আগুনে রান্না করা হয় এবং প্রভুকে নিবেদন করা হয়, সেগুলো খেযে তারা জীবনধারণ করবে| লেবি পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের এটিই হলো অংশ| 2 অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর মতো লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা জমির কোনো অংশ পাবে না| প্রভু তাদের য়েমন বলেছিলেন সেই অনুসারে লেবীয়দের অংশ হিসেবে প্রভু নিজেই আছেন| 3 “যখন তোমরা বলি হিসাবে গোরু অথবা মেষ হত্যা কর, তখন তোমরা যাজকদের এই অংশগুলো অবশ্যই দেবে; কাঁধ, দুই গাল এবং পাকস্থলী| 4 তোমাদের সংগৃহীত ফসলের প্রথম অংশ তোমরা যাজকদের অবশ্যই দেবে| তোমাদের শস্যের, তোমাদের নতুন দ্রাক্ষারসের এবং তোমাদের তেলের প্রথম অংশ তোমরা তাদের অবশ্যই দেবে| তোমাদের মেষের থেকে সংগৃহীত পশমের প্রথম অংশ তোমরা লেবীয়দের অবশ্যই দেবে| 5 কেন? কারণ তোমাদের প্রভু ঈশ্বর তোমাদের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করেছিলেন এবং চিরকাল যাজক হিসাবে তাঁর সেবা করার জন্য তিনি লেবি এবং তার উত্তরপুরুষদের মনোনীত করেছিলেন| 6 “তোমাদের শহরে বাসকারী কোন লেবীয় যদি তার বাসস্থান ত্যাগ করে, প্রভু য়ে স্থান মনোনীত করেছেন এমন কোন স্থানে বাস করতে আসে, তখন সেখানে 7 প্রভুর সামনে কর্তব্যরত অন্যান্য লেবীয় ভাইদের মতোই এই লেবীয়ও তার প্রভু ঈশ্বরের নামে সেবা করতে পারবে| 8 পৈতৃক অধিকার বিক্রি করে সে য়ে মূল্য় পেয়েছে সেটা ছাড়াও সে অন্যান্য লেবীয়দের সঙ্গে খাবারের সমান অংশ পাবে| 9 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশে তোমরা যখন আসবে, তখন সেখানে অন্যান্য জাতির লোকরা য়ে সকল সাংঘাতিক কাজ করে সেগুলো তোমরা শিখো না| 10 তোমাদের বেদীর ওপরের আগুনে তোমরা তোমাদের পুত্রদের অথবা কন্যাদের উত্সর্গ করবে না| কোন ভাববাদীর সঙ্গে কথা বলে অথবা কোন যাদুকর, কোন ডাইনি অথবা কোন মাযাবীর কাছে গিয়ে নিজেদের ভবিষ্যত্ জানার চেষ্টা করবে না| 11 কাউকে অন্যান্য লোকদের ওপরে যাদুমন্ত্রের প্রযোগ করার চেষ্টা করতে দিও না| তোমাদের কোনো লোককে ভুতুড়িযা অথবা যাদুকর হতে দিও না; এবং মৃত লোকর আত্মার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করো না| 12 ঐ সমস্ত কাজ যারা করে, সেইসব লোকদের প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, ঘৃণা করেন| এই কারণেই প্রভু ঐ সমস্ত জাতির লোকদের তোমাদের সামনে দেশ ছেড়ে য়েতে বাধ্য করেছেন| 13 তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের কাছে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বস্ত থাকবে| 14 “তোমরা য়ে ঐ সমস্ত জাতির লোকদের তোমাদের দেশ ছেড়ে য়েতে বাধ্য করছ তারা তাদের কথা শোনে যারা যাদুবিদযা চর্চা করে এবং ভবিষ্যত্ বলে| কিন্তু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের এই জিনিসগুলো করতে দেবেন না| 15 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের জন্য একজন ভাববাদী পাঠাবেন| তোমাদের নিজের লোকদের মধ্য থেকেই এই ভাববাদী আসবে| সে আমারই মতো হবে| তোমরা অবশ্যই এই ভাববাদীর কথা শুনবে| 16 তোমরা ঈশ্বরের কাছে য়ে চেয়েছিলে সেই অনুযায়ীতিনি এই ভাববাদীকে তোমাদের কাছে পাঠাবেন| যখন তোমরা হোরেব পর্বতে সকলে একত্রিত হয়েছিলে, তখন তোমরা ঈশ্বরের রব শুনে এবং পর্বতমালার ওপরে সেই মহত্ আগুন দেখে ভীত হয়েছিলে| সেজন্য তোমরা বলেছিলে, ‘আমাদের প্রভু ঈশ্বরের রব আমাদের পুনরায আর শোনাবেন না! আমাদের আর সেই মহত্ আগুন দেখতে দেবেন না, দেখলে আমরা মারা যাব!’ 17 “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “তারা যা বলেছে তা যথার্থ| 18 আমি তাদের কাছে তোমার মতোই একজন ভাববাদী পাঠাব| এই ভাববাদী তাদের লোকদের মধ্যেই একজন হবে| সে য়ে কথা অবশ্যই বলবে সেটা আমি তাকে বলে দেব| আমি যা আদেশ করি তার সমস্ত কিছু সে লোকদের বলবে| 19 এই ভাববাদী আমার জন্যই বলবে এবং যখন সে কথা বলবে, যদি কোন ব্যক্তি আমার আদেশ না শোনে তাহলে আমি সেই ব্যক্তিকে শাস্তি দেব|’ 20 “কিন্তু একজন ভাববাদী এমন কিছু বলতে পারে যা আমি তাকে বলার জন্য বলি নি| এবং সে লোকদের এও বলতে পারে য়ে সে আমার হয়েই তা বলছে| যদি এরকম ঘটনা ঘটে তাহলে সেই ভাববাদীকে অবশ্যই হত্যা করা উচিত্| এছাড়াও একজন ভাববাদী আসতে পারে য়ে অন্যান্য দেবতার হয়ে কথা বলে| সেই ভাববাদীকেও অবশ্যই হত্যা করা উচিত্| 21 তোমরা হয়তো ভাবতে পার, ‘আমরা কি করে জানতে পারবো য়ে ভাববাদী যা বলছে সেগুলো প্রভুর কথা নয়?’ 22 যদি কোনো ভাববাদী বলে য়ে সে প্রভুর জন্য বলছে, কিন্তু যা বলছে তা না ঘটে, তাহলেই তোমরা জানবে য়ে প্রভু সেটি বলেন নি| তোমরা বুঝতে পারবে য়ে, এই ভাববাদী তার নিজের ধারণার কথাই বলছে| তোমরা তাকে ভয় পেও না|
1 “য়ে দেশে অন্য জাতির বাস, সেই দেশই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের দিচ্ছেন| প্রভু ঐ সমস্ত জাতির লোকদের ধ্বংস করবেন| ঐ সব লোকরা যেখানে বাস করত সেখানে তোমরা বাস করবে| তোমরা তাদের শহরগুলো এবং তাদের বাড়ীগুলো অধিগ্রহণ করবে| 2 সেই ভূমিকে অবশ্যই তিন ভাগে ভাগ করবে| এরপর প্রত্যেকটি অংশে একটি করে শহর পছন্দ কর এবং সেই শহরগুলোতে যাবার রাস্তা তৈরী কর| তাহলে কোন লোক য়ে অপর কোনও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে, সে সেই শহরে নিরাপত্তার জন্য ছুটে য়েতে পারবে| 3 4 “য়ে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে ঐ তিনটি শহরের য়ে কোন একটিতে নিরাপত্তার জন্য ছুটে যায়, তার জন্য এটি হল নিয়ম: সে অবশ্যই এমন একজন ব্যক্তি হবে য়ে অপর ব্যক্তিকে দুর্ঘটনাবশতঃ হত্যা করেছে এবং হত ব্যক্তিকে ঘৃণা করত না| 5 একটি উদাহরণ দেওয়া হল: একজন ব্যক্তি কাঠ কাটার জন্য আরেকজন ব্যক্তির সঙ্গে জঙ্গলে যায়| লোকটি একটি গাছ কাটার জন্য তার কুঠারটিকে দোলায, কিন্তু কুঠারের মাথাটি হাতলের থেকে আলাদা হয়ে অপর ব্যক্তিকে আঘাত করে এবং তাকে হত্যা করে| য়ে ব্যক্তি কুঠারটিকে দুলিযেছিল সে তখন ঐ তিনটি শহরের য়ে কোন একটিতে ছুটে য়েতে পারে এবং নিজেকে নিরাপদ করতে পারে| 6 কিন্তু যদি শহরটি খুব দূরে হয় তাহলে নিহত ব্যক্তির কোন নিকট আত্মীয তাকে তাড়া করে শহরে পৌঁছানোর আগেই ধরে ফেলতে পারে| সেই নিকট আত্মীয খুব ক্রুদ্ধ হতে পারে এবং সেই ব্যক্তিকে হত্যা করতে পারে| অথচ সেই ব্যক্তি হত্যার য়োগ্য ছিল না| কারণ য়ে ব্যক্তিকে সে হত্যা করেছে তাকে সে ঘৃণা করত না| 7 শহরগুলো অবশ্যই সকলের খুব কাছাকাছি হতে হবে| সেই কারণেই আমি তোমাদের তিনটি বিশেষ শহর পছন্দ করার জন্য আদেশ করছি| 8 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন য়ে তিনি তোমাদের দেশকে বৃহত্তর করবেন| তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে দেশ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই সমস্ত দেশই তিনি তোমাদের দেবেন| 9 আমি আজ তোমাদের য়ে আজ্ঞাগুলি দিচ্ছি, তাঁর সেই সমস্ত আদেশগুলো যদি তোমরা সম্পূর্ণভাবে মেনে চল তাহলে তিনি এটি করবেন - যদি তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, ভালোবাসো এবং তিনি যা পছন্দ করেন সেই ভাবেই যদি তোমরা বাস করো| এরপর যখন প্রভু তোমাদের দেশকে বৃহত্তর করবেন সেই সময় তোমরা নিরাপত্তার শহর হিসেবে আরও তিনটি শহরকে বেছে নেবে| তাদের প্রথম তিনটি শহরের সঙ্গে য়োগ করতে হবে| 10 তাহলে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন সেখানে কোন নির্দোষ লোক নিহত হবে না এবং তোমরা কোনো নির্দোষের মৃত্যুর জন্য দোষী হবে না| 11 “কিন্তু কেউ যদি অপর একজনকে ঘৃণা করে বলে লুকিয়ে তাকে হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করে এবং সেই ব্যক্তিকে আক্রমণ করে হত্যা করার পর ঐ নিরাপত্তার শহরগুলোর য়ে কোনও একটিতে দৌড়ে পালিয়ে যায়, 12 তাহলে সেই লোকটি য়ে শহরে বাস করত সেখানকার প্রবীণরা তাকে ধরার জন্য লোক পাঠাবে এবং তাকে নিরাপত্তার শহর থেকে নিয়ে আসবে| এরপর তারা হত্যাকারীকে নিহতের নিকট আত্মীযের হাতে তুলে দেবে| হত্যাকারীকে অবশ্যই মরতে হবে| 13 তোমরা তার জন্য অবশ্যই দুঃখিত হবে না| সে একজন নিষ্পাপ ব্যক্তির হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল| তোমরা অবশ্যই নিরপরাধের রক্তপাতের এই দোষকে ইস্রায়েল থেকে দূর করবে| তাহলে সমস্ত কিছুই তোমাদের জন্য ভালো চলবে| 14 “য়ে পাথরগুলোর সাহায্যে তোমাদের প্রতিবেশীর জমির সীমা চিহ্নিত হয় সেগুলো তোমরা কখনই সরাবে না| অতীতে জমির সীমা চিহ্নিত করার জন্যই ঐ পাথরগুলো রাখা হয়ছিল| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, অধিকার করার জন্য তোমাদের য়ে দেশ দিয়েছেন এই নিয়ম সেখানকার জন্য| 15 “বিধি বিরুদ্ধ কোনো কিছু করার জন্য যদি কোনো লোক অভিযুক্ত হয়, তাহলে সেই লোকটি দোষী একথা প্রমাণ করার জন্য একজন সাক্ষী যথেষ্ট নয়| সেই ব্যক্তি য়ে সত্যই ভুল কাজ করেছিল সেটি প্রমাণ করার জন্য সেখানে অবশ্যই দুজন অথবা তিনজন সাক্ষী থাকতে হবে| 16 “মিথ্যে কথা বলে একজন মিথ্যা সাক্ষী অপর একজন লোককে আঘাত করার চেষ্টা করতে পারে| 17 যদি সেরকম ঘটে তাহলে ঐ দুজন ব্যক্তি অবশ্যই প্রভুর বিশেষ বাড়ীতে যাবে এবং সেই সময় সেখানে কর্তব্যরত যাজকরা এবং বিচারকরা তাদের বিচার করবে| 18 বিচারকরা অবশ্যই সযত্নে অনুসন্ধান করবে| আর যদি প্রমাণ হয় য়ে সাক্ষী সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যে কথা বলেছিল, 19 তাহলে তোমরা তাকে অবশ্যই শাস্তি দেবে| সে অপর ব্যক্তির প্রতি যা যা করতে চেয়েছিল, তোমরা তার প্রতি তাই করবে| এই প্রকারে তোমরা তোমাদের জাতি থেকে দুষ্টাচার দূর করে দেবে| 20 অন্যান্য লোকরা এই ঘটনা শুনে ভয় পাবে এবং তারা এই রকম খারাপ কাজ আর করবে না| 21 “অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ীশাস্তি হবে| য়ে ব্যক্তি খারাপ কাজ করেছে তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য দুঃখিত হয়ো না| যদি কোন ব্যক্তি কারও জীবন নেয়, তাহলে তাকে অবশ্যই নিজের জীবন দিয়ে শোধ করতে হবে| নিয়ম হল: একটি চোখের জন্য একটি চোখ, একটি দাঁতের জন্য একটি দাঁত, একটি হাতের জন্য একটি হাত, একটি পাযের জন্য একটি পা|
1 “তোমরা শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে যদি দেখ য়ে তোমাদের থেকেও তাদের অনেক বেশী ঘোড়া, রথ এবং লোক রয়েছে, তবে ভয় পেও না| কেন? কারণ প্রভু যিনি তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন, তিনি তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে আছেন| 2 “যখন তোমরা যুদ্ধে যাও তখন যাজক অবশ্যই সৈন্যদের কাছে যাবে এবং তাদের সঙ্গে কথা বলবে| 3 যাজক বলবে, ‘ইস্রায়েলের লোকরা আমার কথা শোন! আজ তোমরা তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাচ্ছ| তোমরা সাহস হারিও না! তোমরা চিন্তিত এবং ভীত হয়ো না! শত্রুদের সম্পর্কে ভীত হয়ো না! 4 কেন? কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সঙ্গে যাচ্ছেন| তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন এবং তোমাদের বিজয়ী করবেন!’ 5 “ঐ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত পদাধিকারী সৈন্যদের বলবে, ‘তোমাদের মধ্যে কি এমন কোনও ব্যক্তি আছে য়ে নতুন বাড়ী তৈরী করেছে, কিন্তু সেটিকে এখনও নিবেদন করেনি? সেই ব্যক্তির অবশ্যই বাড়ী ফিরে যাওয়া উচিত্| নয় তো সে যুদ্ধে নিহত হলে অন্য একজন ব্যক্তি তার বাড়ী নিবেদন করবে| 6 এখানে কি এমন কোনও ব্যক্তি আছে য়ে ক্ষেতে দ্রাক্ষার চারা রোপণ করেছে, কিন্তু এখনও পর্য়ন্ত কোন দ্রাক্ষা একত্রিত করেনি? সেই ব্যক্তির অবশ্যই বাড়ী ফিরে যাওয়া উচিত্| কারণ যদি সেই ব্যক্তি যুদ্ধে মারা যায়, তাহলে অপর একজন ব্যক্তি তার ক্ষেতের ফল ভোগ করবে| 7 এখানে কি এমন কোনও ব্যক্তি আছে য়ে বিবাহের জন্য বাগ্দত্ত? সেই ব্যক্তির অবশ্যই বাড়ী ফিরে যাওয়া উচিত্| কারণ যদি সে যুদ্ধে মারা যায়, তাহলে সে যার বাগ্দত্ত ছিল সেই স্ত্রীলোককে অপর একজন ব্যক্তি বিবাহ করবে|’ 8 “সেই লেবীয় পদাধিকারীরা সৈন্যদের একথাও জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন ব্যক্তি আছে য়ে উত্সাহ হারিযেছে এবং ভীত হয়েছে? সে অবশ্যই বাড়ী ফিরে যাবে| তাহলে সে অন্যান্য সৈন্যদেরও নিরুত্সাহ করতে পারবে না|’ 9 পরে সৈন্যদের সঙ্গে পদাধিকারীরা যখন কথাবার্তা শেষ করবে তখন তারা অবশ্যই সেনাধ্যক্ষদের নির্বাচিত করবে| যারা সৈন্যদের নেতৃত্ব দেবে| 10 “যখন তোমরা কোন শহর আক্রমণ করতে যাবে, তখন প্রথমে সেখানকার লোকদের শান্তির আবেদন জানাবে| 11 যদি তারা তোমাদের প্রস্তাব স্বীকার করে এবং দরজা খুলে দেয়, তাহলে সেই শহরের সমস্ত লোকরা তোমাদের ক্রীতদাসে পরিণত হবে এবং তোমাদের জন্য কাজ করতে বাধ্য হবে| 12 কিন্তু যদি শহরের লোকরা তোমাদের শান্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসে তাহলে তোমরা অবশ্যই শহরটিকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলবে| 13 এবং যখন শহরটিকে অধিগ্রহণ করতে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সাহায্য করবেন, তখন তোমরা অবশ্যই সেখানকার সমস্ত পুরুষদের হত্যা করবে| 14 কিন্তু তোমরা তোমাদের নিজেদের জন্য স্ত্রীলোকদের, শিশুদের, গোরু এবং শহরের যাবতীয় জিনিস নিতে পার| তোমরা এই সমস্ত জিনিসগুলো ব্যবহার করতে পার| প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের এই জিনিসগুলি দিয়েছেন| 15 তোমাদের থেকে অনেক দূরের সমস্ত শহরগুলোর প্রতি তোমরা এই কাজ করবে - তোমরা য়ে দেশে বাস কর সেখানকার শহরগুলো বাদ দেবে| 16 “কিন্তু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন তোমরা যখন সেই দেশের শহরগুলো অধিগ্রহণ করবে, তখন সেখানে শ্বাস নেয় এমন কাউকে জীবিত রাখবে না| 17 তোমরা অবশ্যই প্রভুর আদেশ অনুসারে হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয় পরিষীয়, হিব্বীয় এবং য়িবুষীযদের পুরোপুরি ধ্বংস করবে| 18 কারণ তা না হলে তারা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করতে শেখাবে; তারা তাদের দেবতাদের পূজা করার সময় য়ে সাংঘাতিক কাজগুলি করে সেগুলো তোমাদের শেখাবে| 19 “যখন তোমরা একটি শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, তোমরা দীর্ঘকাল ধরে সেই শহরটিকে ঘিরে রাখতে পার| সেই শহরের চারদিকের ফলগাছগুলো তোমরা কখনই কাটবে না| তোমরা এই গাছগুলোর ফল খেতে পার কিন্তু তোমরা কখনই তাদের কাটবে না| এই গাছগুলো শত্রু নয়, সুতরাং তাদের নষ্ট করো না! 20 কিন্তু তোমরা য়ে গাছগুলোকে ফলের গাছ নয় বলে জানো, সেগুলোকে কাটতে পারো| সেই শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অস্ত্র তৈরীতে এই গাছগুলো ব্যবহার করতে পারো| শহরটির পতন না হওয়া পর্য়ন্ত তোমরা ঐ জিনিসগুলি ব্যবহার করতে পারো|
1 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন, সেখানকার ক্ষেতে যদি তোমরা কোনো মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখ, কিন্তু কে হত্যা করেছে তা যদি জানা না যায়, 2 তখন তোমাদের দলনেতারা এবং বিচারকরা সেখানে যাবে এবং নিহত ব্যক্তির চারদিকের শহরগুলোর দূরত্ব পরিমাপ করবে| 3 যখন তোমরা জানতে পারবে কোন শহরটি নিহত ব্যক্তির সবথেকে কাছে, তখন সেই শহরের দলনেতারা তাদের পশুশালা থেকে এমন একটি গোবত্স নিয়ে আসবে যাকে কখনই কোন কাজে ব্যবহার করা হয় নি এবং য়ে য়োযালি বহন করে নি| 4 সেই শহরের দলনেতারা তখন গোবত্সটিকে এমন একটি উপত্যকায নামিযে আনবে যেখানে সবসময় জলের স্রোত বয| এটিকে অবশ্যই এমন একটি উপত্যকা হতে হবে যা কখনও চাষ করা হয়নি বা যেখানে কিছু রোপণ করা হয়নি| এরপর নেতারা সেই উপত্যকায গোবত্সটির ঘাড় ভাঙ্গবে| 5 যাজকরা, লেবীর উত্তরপুরুষরা অবশ্যই সেখানে যাবে| (প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাঁর সেবার জন্য এবং তাঁর নামে লোকদের আশীর্বাদ করার জন্য এই যাজকদের নির্বাচিত করেছেন| এবং সমস্ত বিবাদ ও আঘাতের বিচার তারাই করবেন|) 6 নিহত ব্যক্তির সব থেকে কাছের শহরের সমস্ত নেতারা উপত্যকায য়ে গোবত্সের ঘাড় ভাঙ্গা হয়েছিল তার ওপরে অবশ্যই তাদের হাত ধোবে| 7 এই নেতারা বলবে, ‘আমরা এই ব্যক্তিকে হত্যা করিনি এবং আমরা এটি ঘটতেও দেখিনি| 8 হে প্রভু, তুমি য়ে ইস্রায়েলকে রক্ষা করেছিলে তাদেরই শুদ্ধ করো| একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করার দোষ আমাদের ওপর চাপিও না|’ এই ভাবে একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করার জন্য ঐ সমস্ত লোকদের দোষ ক্ষমা করা হবে| 9 এই ভাবে তোমরা প্রভুর চোখে যা যথার্থ তাই করবে এবং তোমাদের জাতি থেকে নিরপরাধের রক্তপাতের দোষ দূর করবে| 10 “তোমরা তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাদের পরাজিত করতে তোমাদের সাহায্য করতে পারেন এবং তোমরা তোমাদের শত্রুদের বন্দী করে আনতে পারো| 11 বন্দীদের মধ্যে কোনো সুন্দরী স্ত্রীলোককে দেখে মুগ্ধ হয়ে তোমাদের স্ত্রী হিসেবে তোমরা চাইতে পারো| 12 তখন তাকে তোমার বাড়ীতে নিয়ে আসবে| সে অবশ্যই তার মাথা কামাবে এবং নখ কাটবে| 13 সে য়ে জামাকাপড়গুলি পরে আছে যার থেকে বোঝা যায় য়ে সে যুদ্ধে বন্দীনী ছিল, সেগুলি সে অবশ্যই খুলে ফেলবে| সে অবশ্যই পুরো এক মাস তোমার বাড়ীতে থাকবে এবং বাবা মাকে হারানোর জন্য বিলাপ করবে| এরপর তুমি তার কাছে য়েতে পার এবং তার স্বামী হতে পার| সে তোমার স্ত্রী হবে| 14 যদি তুমি তার সঙ্গে সুখী না হও, তাহলে তুমি তাকে ত্যাগ করবে এবং তাকে স্বাধীনভাবে চলে য়েতে দেবে| তুমি তাকে বিক্রি করতে পারবে না| তুমি কখনই তার সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করবে না কারণ তার সঙ্গে তোমার য়ৌন সম্পর্ক ছিল| 15 “কোন ব্যক্তির দু’জন স্ত্রী থাকতে পারে এবং সে একজন স্ত্রীকে আরেকজনের থেকে বেশী ভালোবাসতে পারে| কিন্তু যদি দু’জন স্ত্রীই তার জন্য সন্তান প্রসব করে এবং প্রথম সন্তানটি সে য়ে স্ত্রীকে ভালোবাসে না তার হয়, 16 তবে সেই ব্যক্তি তার সন্তানদের মধ্যে সম্পত্তির ভাগ করে দেবার সময় তার প্রথমজাত সন্তানের অংশ কখনোই সে য়ে স্ত্রীকে ভালোবাসে তার পুত্রকে দিতে পারবে না| 17 সেই ব্যক্তি য়ে স্ত্রীকে ভালোবাসে না তার থেকে জাত তার প্রথম পুত্রের সমস্ত অধিকারগুলি তাকে মেনে নিতে হবে এবং সে তার প্রথম পুত্রকে অবশ্যই তার সম্পত্তির দুই অংশ দেবে, কারণ সেই সন্তান তার প্রথম সন্তান| প্রথমজাত সন্তান হিসাবে সমস্ত অধিকার তার আছে| 18 “কোন ব্যক্তির এমন এক পুত্র থাকতে পারে য়ে জেদী ও বিরোধী এবং তার পিতামাতাকে মানে না| তারা সেই পুত্রকে শাস্তি দেয় কিন্তু সে তবুও তাদের কথা শুনতে অস্বীকার করে| 19 তার পিতা এবং মাতা তখন তাকে শহরের সভাস্থলে শহরের নেতাদের কাছে নিয়ে আসবে| 20 তারা শহরের নেতাদের বলবে: ‘আমাদের পুত্র অবাধ্য এবং কোন কিছু মেনে চলতে অস্বীকার করে| আমরা তাকে যা করতে বলি তার কোনও কিছুই সে করে না| সে মদ্যপাযী এবং পেটুক|’ 21 তখন শহরের লোকরা পাথরের আঘাতে সেই পুত্রকে হত্যা করবে| এই ভাবে তোমরা তোমাদের মধ্য থেকে এই দুষ্টকে সরিয়ে দেবে| ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা এই ঘটনা সম্বন্ধে জানবে এবং ভীত হবে| 22 “মৃত্যুদণ্ডের উপযুক্ত পাপ করেছে য়ে ব্যক্তি তাকে হত্যা করে তার শরীরটিকে কোন গাছের ওপরে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে| 23 তোমরা সারা রাত ধরে সেই মৃতদেহকে গাছে ঝুলিয়ে রেখো না কিন্তু নিশ্চিতভাবে সেই একই দিনে সেই ব্যক্তিকে কবর দিও| কেন? কারণ গাছে ঝোলানো সেই লোকটি ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত| প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশকে তোমরা কখনই অশুচি করবে না|
1 “যদি দেখ য়ে তোমাদের প্রতিবেশীর বলদ বা মেষগুলি পথ হারিযেছে, তবে তোমরা বিষয়টিকে উপেক্ষা করবে না| সেটিকে অবশ্যই তার মালিকের কাছে ফিরিয়ে আনবে| 2 যদি মালিক কাছাকাছি বাস না করে অথবা যদি তোমরা না জানো য়ে এটি কার, তাহলে তোমরা সেই পশুকে তোমাদের বাড়ী নিয়ে য়েতে পারো এবং যতক্ষণ পর্য়ন্ত না মালিক এটির খোঁজে আসে ততক্ষণ পর্য়ন্ত তোমরা এটিকে রাখতে পার| পরে তাকে এটি ফিরিয়ে দেবে| 3 তোমাদের প্রতিবেশী যদি তার গাধা, জামাকাপড় অথবা অন্য কোনো কিছু হারায় তাহলেও তোমরা ঐ একই কাজ করবে| তোমরা এই বিষয়টি এড়িয়ে য়েও না| 4 “যদি তোমাদের প্রতিবেশীর গাধা অথবা গরু রাস্তায় পড়ে যায়, তোমরা সেটিকে অবহেলা করবে না| তোমরা অবশ্যই সেটিকে পুনরায দাঁড় করাতে সাহায্য করবে| 5 “স্ত্রীলোক কখনই পুরুষদের পোশাক পরবে না এবং পুরুষ কখনই স্ত্রীলোকদের পোশাক পরবে না| য়ে কেউ এই কাজ করে সে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের কাছে ঘৃণার পাত্র| 6 “তোমরা যদি গাছের ওপরে অথবা মাঠে কোনো পাখীর বাসা দেখ যেখানে মা পাখী তার শাবকদের সঙ্গে অথবা ডিমের ওপরে বসে আছে, তাহলে তোমরা কখনই বাচ্চাদের সঙ্গে মা পাখীকে নেবে না| 7 তোমরা তোমাদের নিজেদের জন্য বাচ্চাদের নিতে পারো| কিন্তু তোমরা মাকে অবশ্যই য়েতে দেবে| যদি তোমরা এই বিধিগুলি মেনে চল, তাহলে তোমাদের মঙ্গল হবে এবং তোমরা বহুদিন বেঁচে থাকবে| 8 “যখন তোমরা নতুন বাড়ী তৈরী কর, তোমরা ছাদের চারধারে অবশ্যই দেওয়াল তুলবে| তাহলে বাড়ী থেকে পড়ে গিয়ে কোন ব্যক্তির মৃত্যুর জন্য তোমরা অবশ্যই দাযী হবে না| 9 “তোমরা-দ্রাক্ষা ক্ষেত্রে দুই ধরণের শস্যের বীজ বপন করবে না| কেন? কারণ তাহলে তোমার রোপন করা সমস্ত শস্য এবং এমনকি দ্রাক্ষা-ক্ষেত্রের দ্রাক্ষা থেকেও তুমি বঞ্চিত হবে| 10 “তোমরা একই সঙ্গে একটি গরু এবং একটি গাধার সাহায্যে চাষ করবে না| 11 “পশম এবং মসীনার সাহায্যে বোনা কাপড় তোমরা কখনই পরবে না| 12 “তোমরা য়ে আলগা পোশাক পরো তার চারকোণের সুতোর গোছা বেঁধে খোপ দিও| 13 “একজন পুরুষ কোন স্ত্রীলোককে বিবাহ করে তার সাথে য়ৌন সম্পর্ক স্থাপন করার পরে মনস্থ করতে পারে সে তাকে আর চায না| 14 সেই জন্য সে মিথ্যাভাবে বলতে পারে, ‘আমি এই স্ত্রীলোকটিকে বিবাহ করেছিলাম বটে কিন্তু য়ৌন সহবাসের সময় দেখলাম য়ে সে কুমারী নয়|’ এই বলে সে সেই স্ত্রীলোকটির উপর দুর্নাম আনতে পারে| 15 এই রকম ঘটলে মেয়েটির পিতা-মাতা সেই মেয়েটির কুমারীত্বের প্রমাণ নিয়ে নগরের প্রবীণদের সাথে নগরের সভাস্থলে উপস্থিত হবে| 16 মেয়েটির পিতা প্রবীণদের বলবেন, ‘আমি আমার মেয়েকে এই লোকটির হাতে তার স্ত্রী হিসাবে দিয়েছিলাম কিন্তু এখন সে তাকে পছন্দ করে না| 17 এই লোকটি আমার মেয়ের নামে মিথ্যা বলেছে| সে বলেছে, “তোমার মেয়ে কুমারী ছিল না|” কিন্তু এই দেখুন আমার মেয়ে য়ে কুমারী তার প্রমাণ|” এই বলে তারা কাপড়টি নগরের প্রবীণদের দেখাবে| 18 তখন সেই নগরের প্রবীণরা অবশ্যই সেই লোকটিকে নিয়ে গিয়ে শাস্তি দেবে| 19 তারা অবশ্যই লোকটির জন্য 40 আউন্স রৌপ্য় জরিমানা করবে| সেই টাকা য়েন মেয়েটির পিতাকে দেওয়া হয়, কারণ মেয়েটির স্বামী একজন ইস্রায়েলীয় কুমারীর উপর দুর্নাম এনেছে| আর সেই মেয়েটি সেই লোকটির স্ত্রী হয়েই থাকবে| সেই লোকটি তার জীবনকালে তাকে বিবাহ বিচ্ছেদ দিতে পারবে না| 20 “কিন্তু এও হতে পারে য়ে মেয়েটির স্বামী তার সম্বন্ধে যা বলেছে তা সত্য| স্ত্রীলোকটির মাতা-পিতার কাছে তার কুমারীত্বের প্রমাণ নাও থাকতে পারে| 21 যদি তাই ঘটে তবে নগরের প্রবীণরা সেই মেয়েটিকে নিয়ে তার পিতার বাড়ীর দরজায আসবে| তারপর সেই নগরের লোকরা মেয়েটিকে পাথর মেরে হত্যা করবে| কারণ ইস্রায়েলের মধ্যে সে লজ্জাজনক কাজ করেছে| সে পিতার বাড়ীতে বেশ্যার মতো ব্যবহার করেছে| তুমি তোমার লোকদের মধ্যে থেকে এইভাবে দুষ্টাচার দূর করবে| 22 “যদি কোন পুরুষ অপরের স্ত্রীর সাথে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত থাকাকালীন ধরা পড়ে তবে দুজনকেই অবশ্যই মরতে হবে - সেই স্ত্রীলোকটিকে এবং তার সঙ্গে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত পুরুষটিকে হত্যা করে তোমরা অবশ্যই ইস্রায়েলের মধ্যে থেকে এই দুষ্টাচার দূর করবে| 23 “কোন লোক অপরের বাগদত্তা কোন কুমারীকে নগরের মধ্যে দেখতে পেয়ে তার সাথে য়ৌন সহবাসে লিপ্ত হতে পারে| 24 এই রকম ঘটলে তুমি অবশ্যই তাদের দুজনকে নগরের দ্বারে সকলের সামনে নিয়ে এসে পাথর মেরে হত্যা করবে| লোকটিকে হত্যা করার কারণ সে অপরের স্ত্রীর সাথে য়ৌন পাপ করেছে; এবং মেয়েটিকে হত্যা করার কারণ সে নগরের মধ্যে থাকলেও সাহায্যের জন্য চিত্কার করে নি| তোমরা অবশ্যই এই ভাবে লোকদের মধ্য হতে এই দুষ্টাচার দূর করবে| 25 “কিন্তু কোন লোক যদি বাগ্দত্তা স্ত্রীলোককে ক্ষেতের মধ্যে পেয়ে জোরপূর্বক তার সাথে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় তবে কেবল লোকটিকেই মরতে হবে| 26 তোমরা অবশ্যই সেই মেয়েটির প্রতি কিছু করবে না| সে মৃত্যুর য়োগ্য এমন কোন অপরাধ করে নি| এই ঘটনা প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে উঠে তাকে হত্যা করার মতো| 27 লোকটি ক্ষেতে সেই বাগ্দত্তা মেয়েটিকে দেখে তাকে আক্রমণ করল| হয়তো মেয়েটি সাহায্যের জন্যও চিত্কার করেছিল কিন্তু সাহায্যের জন্য কেউ ছিল না| সুতরাং তাকে য়েন শাস্তি দেওয়া না হয়| 28 “একজন লোক হয়তো বাগ্দত্তা নয় এমন কোন কুমারীকে পেয়ে তার সাথে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারে| যদি অন্য লোকরা তা ঘটতে দেখে, 29 তাহলে সে মেয়েটির পিতাকে 20 আউন্স রূপো দেবে এবং সেই মেয়েটি লোকটির স্ত্রী হবে| য়েহেতু সে য়ৌন পাপ করেছিল, তাই তার জীবনকালে সে তাকে ত্যাগ করতে পারবে না| 30 “কোন লোক য়েন তার পিতার স্ত্রী অর্থাত্ সত্ মাযের সাথে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে তার পিতাকে লজ্জায না ফেলে|”
1 “য়ে লোকরা অণ্ডকোষ চূর্ণ অথবা জননাঙ্গ ছিন্ন হয়ে গেছে, সে ইস্রায়েলের লোকদের সাথে প্রভুর উপাসনায য়োগ দিতে পারবে না| 2 যদি কোন লোকর মাতাপিতা বৈধ ভাবে বিয়ে না করে থাকে তবে সেই লোকটি ইস্রায়েলের লোকদের সাথে প্রভুর উপাসনায য়োগ দিতে পারবে না এবং তার উত্তরপুরুষদের দশ পুরুষ পর্য়ন্ত কেউ উপাসনাকারীদের দলে য়োগ দিতে পারবে না| 3 “অম্মোনীয় ও মোয়াবীয় কেউই ইস্রায়েলের লোকদের সাথে য়োগ দিয়ে প্রভুর উপাসনা করতে পারবে না| তাদের উত্তরপুরুষরা দশ পুরুষ পর্য়ন্ত কেউই সেই দলে য়োগ দিতে পারবে না| 4 কারণ মিশর থেকে তোমাদের বের হয়ে আসার সময় যাত্রা পথে তারা রুটি ও জল নিয়ে তোমাদের সাথে দেখা করে নি| তারা তোমাদের অভিশাপ দেবার জন্য বিলিযমকে ভাড়া করার চেষ্টা করেছিল| (বিযোরের পুত্র বিলিযম ছিল অরাম, নহরযিমাস্থ পথোর নগরের লোক|) 5 কিন্তু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, বিলিয়মের কথা গ্রাহ্য করেন নি| প্রভু তোমাদের জন্য সেই অভিশাপ আশীর্বাদে বদলে দিলেন| কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমায় ভালবাসেন| 6 তোমরা কখনই অম্মোনীয় ও মোয়াবীয় লোকদের সাথে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করবে না| তোমরা যত দিন বেঁচে থাকবে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে না| 7 “তোমরা অবশ্যই কোন ইদোমীয়কে ঘৃণা করবে না, কারণ সে তোমার আত্মীয| তোমরা অবশ্যই কোন মিশরীয়কে ঘৃণা করবে না, কারণ তোমরা তাদের দেশে বিদেশী ও প্রবাসী ছিলে| 8 ইদোমীয়দের তৃতীয় পুরুষের বংশধররা এবং মিশরীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের সাথে প্রভুর উপাসনায য়োগ দিতে পারে| 9 “যখন তোমাদের সৈন্যরা শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করতে যায়, তখন সেই সব বিষয় থেকে দূরে থেকো যা তোমাদের অশুচি করে| 10 যদি রাতের স্বপ্নে রেতপাতের ফলে কেউ অশুচি হয়, তবে সে শিবিরের বাইরে যাবে| সে শিবির থেকে দূরে থাকবে| 11 পরে বিকেল হলে সেই ব্যক্তি জলে স্নান করবে এবং সূর্য় অস্ত গেলে সে আবার শিবিরে ফিরে আসতে পারে| 12 “পায়খানা করার জন্য শিবিরের বাইরে একটা জায়গা ঠিক করে রাখবে| 13 তোমাদের অস্ত্রের সাথে একটা লাঠিও রেখ; যার সাহায্যে গর্ত করে পায়খানা করার পর চাপা দেবে| 14 কেন? কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পরিত্রাণ করতে এবং তোমাদের শত্রুদের পরাজিত করার জন্য তোমাদের শিবিরের মধ্যে গমনাগমণ করেন| সুতরাং শিবিরকে অবশ্যই পবিত্র রাখবে| তাহলে প্রভু বিরক্তিকর কিছু দেখে তোমাদের ছেড়ে যাবেন না| 15 “যদি কোন ক্রীতদাস তার মনিবের কাছ থেকে পালিয়ে তোমার কাছে আসে, তবে তুমি সেই ক্রীতদাসকে তার মনিবের কাছে ফেরত পাঠাবে না| 16 এই ক্রীতদাস তোমার সাথে তার পছন্দমত য়ে কোন শহরে বাস করতে পারে| তুমি তাকে কষ্ট দিও না| 17 “কোন ইস্রায়েলীয় পুরুষ বা নারী কখনও য়েন মন্দিরের বেশ্যা না হয়| 18 কোন পুরুষ বা নারী বেশ্যা বৃত্তির দ্বারা উপার্জিত অর্থ য়েন তোমার প্রভু ঈশ্বরের বিশেষ গৃহে না আনে| সেই অর্থ দিয়ে কেউ য়েন ঈশ্বরের কাছে করা মানত পূর্ণ না করে| কারণ যারা নিজের দেহকে য়ৌন পাপের জন্য বিক্রি করে দেয় প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তাদের ঘৃণা করেন|” 19 “তুমি যখন কোন ইস্রায়েলীয়কে কিছু ধার দাও, তখন সুদ ধার্য়্য় কোরো না| টাকা, খাবার বা অন্য যা কিছুই সুদ আদাযে সক্ষম তার উপরে তোমরা সুদ ধার্য়্য় করবে না| 20 তোমরা কোন বিদেশীর কাছে সুদ নিতে পার, কিন্তু তোমরা কোন ইস্রায়েলীয়র কাছ থেকে সুদ নিও না| তোমরা এই বিধিগুলো মেনে চললে তোমাদের প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমরা য়ে দেশে বাস করতে যাচ্ছ সেখানে তোমরা যা কিছু করবে তাতেই আশীর্বাদ করবেন| 21 “তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে কিছু মানত করলে তা দিতে দেরী করো না কারণ তোমার প্রভু ঈশ্বর তা তোমার কাছ থেকে দাবী করবেন| তুমি যা দেবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলে তা না দিলে তোমার পাপ হবে| কিন্তু যদি মানত না কর তাহলে তোমার পাপ হবে না| 22 23 কিন্তু য়ে প্রতিজ্ঞাগুলি করেছিলে সেগুলি অবশ্যই রাখবে| তুমি যদি ঈশ্বরের কাছে কোন বিশেষ প্রতিজ্ঞা করে থাক তাহলে তোমার অবশ্যই সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করা উচিত্| কারণ তুমিই সেই প্রতিজ্ঞাগুলি করেছিলে| প্রভু তোমাকে এটা করতে বাধ্য করেন নি| 24 “তুমি কারও দ্রাক্ষা ক্ষেতে গেলে তোমার যত ইচ্ছা দ্রাক্ষা খেতে পার, কিন্তু তোমার ঝুড়িতে একটাও সংগ্রহ করবে না| 25 যখন তুমি কোন লোকর ক্ষেতে যাও, তখন হাতে ছিঁড়ে যত শীষ খেতে পার খেও, কিন্তু কাস্তে ব্যবহার করে সেই শীষ কেটে নিয়ে য়েতে পারো না|
1 “বিয়ে করার পর যদি কোন পুরুষ তার স্ত্রীর মধ্যে এমন কিছু লজ্জাকর জিনিষ দেখে যার জন্য সে তার প্রতি সন্তুষ্ট না হয়, তবে সে ত্যাগ পত্র লিখে তাকে বাড়ী থেকে বিদায করে দেবে| 2 সেই ঘর ত্যাগ করার পর সেই স্ত্রী গিয়ে অন্য কোন পুরুষের স্ত্রী হতে পারে| 3 কিন্তু এমন হতে পারে য়ে সেই নতুন স্বামীও তাকে পছন্দ করল না এবং বাড়ী থেকে বিদায করল| তারপর যদি দ্বিতীয স্বামী তাকে বিবাহ বিচ্ছেদ দেয়, অথবা যদি সে মারা যায় তবে প্রথম স্বামী আর তাকে তার স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে না| সে তার কাছে অশুচি, তাই সে যদি আবার বিয়ে করে তবে সে প্রভু যা ঘৃণা করেন তাই করবে| প্রভু, তোমার ঈশ্বর, অধিকারের জন্য য়ে দেশ দিচ্ছেন সেখানে তুমি অবশ্যই এভাবে পাপ করবে না| 4 5 “সবে বিয়ে হয়েছে এমন লোকর সৈন্যবাহিনীতে অথবা অন্য এরকম কোন বিশেষ কাজে য়োগ দেবার প্রযোজন নেই| এক বছরের জন্য সে স্বাধীনভাবে বাড়ীতে থেকে তার স্ত্রীকে খুশী করতে পারে| 6 “যখন তোমরা কাউকে ধার দাও, তখন বন্ধক হিসাবে য়াঁতার কোন অংশ নিও না| কারণ তা করলে তা তার খাবার কেড়ে নেওয়ার সমান হয়| 7 “ইস্রায়েলীয় কোন লোক যদি অপর কোন একজন ইস্রায়েলীয়কে চুরি করে তাকে দাস হিসাবে বিক্রি করে, তবে সেই চোরকে য়েন হত্যা করা হয়| এই ভাবে তোমরা তোমাদের মধ্যে থেকে দুষ্টাচার দূর করবে| 8 “তোমার খারাপ ধরণের কোন চর্মরোগ হলে লেবীয় যাজকরা যা করতে বলে যত্ন সহকারে তার সব কথা পালন কোর| আমি সেই যাজকদের যা আজ্ঞা করেছি তা যত্নের সাথে পালন করো| 9 মনে রেখো, মিশর থেকে বের হয়ে আসার সময় প্রভু, তোমার ঈশ্বর, মরিযমের প্রতি কি করেছিলেন| 10 “কোন লোককে কিছু ধার দেওয়ার সময় বন্ধক নেওয়ার জন্য তার বাড়ীতে ঢুকবে না| 11 সে বন্ধক নিয়ে তার বাড়ী থেকে বেরিয়ে আসার সময় তুমি তার বাড়ীর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবে| 12 যদি সেই লোকটি গরীব হয় তবে সে হয়তো বন্ধক হিসাবে তার গরম কাপড় দিতে পারে| এই ধরণের বন্ধক সূর্য়াস্তের পর তোমার কাছে রাখবে না| 13 তার এই বন্ধক রোজ বিকেলে তার কাছে ফিরিয়ে দিও| তাহলে সে শোবার জন্য কাপড় পাবে| সে তোমাকে আশীর্বাদ করবে, আর প্রভু, তোমার ঈশ্বর, এই কাজকে ধার্মিকতার কাজ হিসাবে গণ্য করবেন| 14 “দরিদ্র এবং অভাবী শ্রমিককে তোমরা মজুরীর ব্যাপারে ঠকাবে না| সে তোমাদের কোন নগরে বাসকারী ইস্রায়েলীয় হোক বা বিদেশী হোক তাতে কিছু এসে যায় না| 15 প্রতিদিন সূর্য়াস্তের আগে তাকে তার বেতন মিটিযে দেবে, কারণ সে গরীব এবং ঐ অর্থের উপরেই সে নির্ভর করে| যদি তুমি তার বেতন মিটিযে না দাও, সে তোমার বিরুদ্ধে প্রভুর কাছে অনুয়োগ করবে এবং তুমি সেই পাপে দোষী হবে| 16 “সন্তান দোষ করলে পিতামাতার বা পিতামাতা দোষ করলে তার জন্য সন্তানের প্রাণদণ্ড দেওয়া যাবে না| কোন ব্যক্তিকে কেবল তার নিজের করা অন্যাযের জন্যই প্রাণদণ্ড দেওয়া যাবে| 17 “পরদেশী এবং অনাথদের বিচারে অন্যায় করো না| আর বন্ধক হিসাবে কখনও কোন বিধবার কাপড় নিও না| 18 মনে রেখো, তোমরা মিশরে গরীব ও দাস ছিলে এবং প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সেই অবস্থা থেকে মুক্ত করে আনলেন| সেই জন্যই গরীবদের প্রতি আমি তোমাদের এই কাজ করতে বলি| 19 “ক্ষেতে শস্য কাটার সময় তুমি যদি ভুলে গিয়ে কিছু শস্য মাঠে ফেলে এসে থাকো, তাহলে সেগুলি সংগ্রহ করার জন্য আবার ফিরে য়েও না, সেটা বিদেশী, অনাথ বা বিধবাদের জন্য থাকবে| তুমি তাদের জন্য কিছু শস্য রাখলে তোমরা যা কিছু কর প্রভু ঈশ্বর তাতেই তোমাদের আশীর্বাদ করবেন| 20 তুমি যখন জলপাই গাছের ফল পাড়ার জন্য ঝাড় তখন আবার প্রতিটি শাখা খুঁজে খুঁজে দেখো না| য়ে জলপাই ফেলে রাখলে তা বিদেশী, পিতৃহীন ও বিধবাদের জন্য রইল| 21 তুমি যখন দ্রাক্ষা ক্ষেতের দ্রাক্ষা সংগ্রহ কর তখন পড়ে থাকা দ্রাক্ষা আবার কুড়াবার জন্য য়েও না| সেই দ্রাক্ষাগুলো বিদেশী, পিতৃহীন এবং বিধবাদের জন্য রাখ| 22 মনে রেখো, তুমি মিশরে গরীব দাস ছিলে| সেই জন্য গরীবদের জন্য আমি তোমাকে এই কাজগুলো করতে বলি|
1 “দুই ব্যক্তির মধ্যে বিবাদ হলে তারা য়েন আদালতে যায়| বিচারকর্তাদের কাজ হল ঠিক করা কে দোষী আর কে নির্দোষ| 2 যদি বিচারকর্তা ঠিক করেন য়ে কোন ব্যক্তিকে বেত মারা হবে, তবে তিনি য়েন তাকে মাটির দিকে মুখ করে শোযান| বিচারকর্তার সামনে য়েন দোষী ব্যক্তিকে বেত মারা হয়| অপরাধের গুরুত্ব অনুসারে য়েন আঘাত করার সংখ্যা ঠিক করা হয়| 3 যদি তুমি কোন ব্যক্তিকে 40 বারের বেশী প্রহার করে থাক তার অর্থ দোষী ব্যক্তিটির জীবন তোমার কাছে মূল্য়বান নয়| 4 “শস্য মাড়ার জন্য পশু ব্যবহার করলে পশুটিকে শস্য না খেতে দেওয়ার জন্য তার মুখ বেঁধে দেওয়া উচিত্ নয়| 5 “দুই ভাই একসাথে বাসকালীন যদি তাদের একজন কোন পুত্রের জন্ম না দিয়ে মারা যায় তবে সেই মৃত ভাইযের স্ত্রী য়েন পরিবারের বাইরে কোন বিদেশীকে বিয়ে না করে| সেক্ষেত্রে তার স্বামীর ভাই-ই তাকে তার স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করে তার সাথে য়ৌন সম্পর্ক স্থাপন করবে| সেই দেবর তার প্রতি দেবরের কর্তব্য করবে| 6 আর প্রথম পুত্রের জন্ম হলে সেই পুত্র সেই মৃত ভাইযের জায়গা নেবে| তাহলে সেই মৃত ভাইযের নাম ইস্রায়েল থেকে লোপ পাবে না| 7 যদি সেই ব্যক্তি তার ভাইযের স্ত্রীকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে তবে সেই স্ত্রী য়েন অবশ্যই নগরের সভাস্থলে প্রাচীনদের কাছে যায় এবং তাদের এই কথা বলে, ‘আমার স্বামীর ভাই ইস্রায়েলে তার দাদার নাম জীবিত রাখতে অস্বীকার করছে| সে আমার প্রতি দেবরের কর্তব্য পালন করবে না|’ 8 তখন সেই নগরের প্রাচীনরা সেই ব্যক্তিকে ডেকে তার সাথে কথা বলবে| যদি সেই ব্যক্তি একগুঁযে মনোভাব নিয়ে বলে, ‘আমি তাকে গ্রহণ করতে চাই না|’ 9 তবে সেই স্ত্রী প্রাচীনদের উপস্থিতিতে তার সামনে আসবে| সেই স্ত্রী সেই ভাইযের পাযের জুতো চটি খুলে নিয়ে তার মুখে থুতু দেবে এবং বলবে, ‘য়ে কেউ তার ভাইযের বংশ রক্ষা না করে, তার প্রতি এই রকম করা হবে|’ 10 তখন ইস্রায়েলে সেই ভাইযের পরিবার ‘মুক্ত পাদুকের কুল’ বলে পরিচিত হবে|’ 11 “দুই ব্যক্তির মধ্যে ঝগড়া হলে কোন এক ব্যক্তির স্ত্রী তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে পারে, কিন্তু সে য়েন কখনই অন্য ব্যক্তির য়ৌনাঙ্গ না ধরে| 12 সেই কাজ করলে তার হাত কেটে ফেলবে, তার জন্য দুঃখ পেও না| 13 “লোককে ঠকাবার জন্য দুই ধরণের বাটখারা অর্থাত্ খুব ভারী ও খুব হাল্কা বাটখারা ব্যবহার করো না| 14 তোমার বাড়ীতে খুব বড় বা খুব ছোট পরিমাণ পাত্র রেখো না| 15 তুমি অবশ্যই সঠিক মাপের ওজন বাটখারা ও পরিমাণ পাত্র ব্যবহার করবে| তাহলে তোমার প্রভু ঈশ্বর তোমায় য়ে দেশ দিচ্ছেন, সেই দেশে তুমি দীর্ঘজীবি হবে| 16 কারণ যারা এই ধরণের কাজ করে তারা অন্যায় করে এবং তোমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে ঘৃণার পাত্র হয়| 17 “মনে করে দেখো তোমরা মিশর দেশ থেকে বের হয়ে আসার পর পথে অমালেকীযরা তোমাদের প্রতি কি করেছিল| 18 তুমি যখন ক্লান্ত ও দুর্বল সেই সময় তারা তোমাকে আক্রমণ করল| তোমাদের মধ্যে যারা পিছিযে পড়ে আস্তে আস্তে হাঁটছিল তাদের সকলকে তারা হত্যা করেছিল| অমালেকীযরা ঈশ্বরকে সম্মান করে নি| 19 সেই জন্যই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন, সেই দেশের চারদিকের সমস্ত শত্রু হতে তিনি তোমাদের বিশ্রাম দিলে পর তোমরা পৃথিবী থেকে অমালেকীযদের স্মৃতি লোপ করবে| একাজ করতে ভুলো না|
1 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, য়ে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশে তোমরা শীঘ্রই প্রবেশ করবে| সেই দেশ অধিগ্রহণ করার পর তোমরা সেখানে বাস করবে| 2 প্রভুর দেওয়া সেই দেশে শস্য সংগ্রহ করার সময় তোমরা অবশ্যই প্রথম ফসল সংগ্রহ করে ঝুড়িতে রাখবে| তারপর ফসলের সেই প্রথম অংশ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, নিজের জন্য য়ে গৃহ মনোনীত করেন সেইখানে আনবে| 3 সেই সময় য়ে যাজক সেখানে পরিচর্য়ায রয়েছেন তাঁর কাছে গিয়ে বলবে, ‘প্রভু আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে একটি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, য়ে তিনি আমাদের এই দেশ দিতে চলেছেন| আজ আমি প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের কাছে এই বলার জন্য এসেছি য়ে আমি সেই দেশে এসেছি!’ 4 “তখন যাজক তোমার হাত থেকে সেই ঝুড়ি নিয়ে তা প্রভু, তোমার ঈশ্বরের বেদীর সামনে রাখবেন| 5 তখন সেখানে তোমার প্রভু ও ঈশ্বরের সামনে তুমি বলবে: ‘আমার পিতৃপুরুষ একজন অরামীয় পর্য়টক ছিলেন| তিনি মিশরে নেমে গিয়ে সেখানে থাকলেন| সেখানে যাবার সময় তার পরিবারে অল্প লোক ছিল| কিন্তু মিশরে তিনি এক মহান জাতি হয়ে উঠলেন - বহু লোকর এক শক্তিশালী জাতি| 6 মিশরীয়রা আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করল| তারা আমাদের দাস বানাল| তারা আমাদের আঘাত করে কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল| 7 তখন আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রভু ও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানালাম এবং তাদের বিষয়ে অভিযোগ করলাম| প্রভু আমাদের কথা শুনলেন, আমাদের সমস্যা, কঠিন পরিশ্রম ও কষ্টের প্রতি তাঁর নজর পড়ল| 8 তখন প্রভু তাঁর মহান ক্ষমতা ও শক্তি এবং নানা চিহ্ন ও অদ্ভূত লক্ষণ দ্বারা আমাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এলেন| তিনি বিস্মযকর কাজ দেখালেন| 9 এইভাবে তিনি আমাদের এই স্থানে বের করে আনলেন এবং উত্তম বিষয়ে পরিপূর্ণ এমন এই দেশ দিলেন| 10 এখন হে প্রভু তুমি য়ে দেশ দিয়েছ তার প্রথম ফসল আমি তোমার কাছে এনেছি|’“তারপর তুমি অবশ্যই প্রভু, তোমার ঈশ্বরের সামনে সেই ফসল নামিযে রেখে নত হয়ে তাঁর উপাসনা করবে| 11 তারপর তুমি এক সঙ্গে সেই সব উত্তম জিনিস নিয়ে খাওয়াদাওযা ও আনন্দ করবে যা প্রভু, তোমার ঈশ্বর তোমায় ও তোমার পরিবারকে দিয়েছেন| তুমি অবশ্যই সেই সব জিনিস লেবীয়দের সঙ্গে এবং তোমাদের মধ্যে বাসকারী বিদেশীদের সঙ্গে ভাগ করে নেবে| 12 “প্রত্যেক তৃতীয় বছরে তুমি তোমার উত্পন্ন দ্রব্য়ের এক দশমাংশ ওজন করবে, তারপর সেই দশমাংশ লেবীয়দের, তোমার দেশে বাসকারী বিদেশীদের এবং বিধবা ও পিতৃহীনদের দেবে| তাহলে প্রত্যেক শহরে ঐ সব লোকদের যথেষ্ট খাবার থাকবে| সেই তৃতীয় বছরকে বলা হবে দশমাংশ দানের বছর| 13 তুমি অবশ্যই প্রভু, তোমার ঈশ্বরকে বলবে, ‘আমি আমার বাড়ী থেকে উত্পন্ন দ্রব্য়ের পবিত্র অংশ নিয়ে এসে তা লেবীয়দের, বিদেশীদের, পিতৃহীন ও বিধবাদের দিয়েছি| আমি তোমার আজ্ঞার কোনটি পালন করতে অস্বীকার করি নি| আমি সে সব ভুলেও যাই নি| 14 শোকের সময় আমি সেই খাদ্য ভোজন করি নি| সেই খাদ্য সংগ্রহ করার সময় আমি অশুচি ছিলাম না| আমি এই খাবার মৃত লোকদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করি নি| হে প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমি তোমার বাক্য় পালন করেছি এবং তোমার সমস্ত আজ্ঞা পালন করেছি| 15 তোমার পবিত্র আবাস স্বর্গ থেকে দেখ, তোমার প্রজা ইস্রায়েলকে আশীর্বাদ কর এবং তোমার দেওয়া এই দেশকে আশীর্বাদ কর - ঠিক য়েমন দেশ আমাদের দেবে বলে তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে অর্থাত্ অনেক উত্তম বিষয়ে পরিপূর্ণ এক দেশ|’ 16 “আজ এই সমস্ত বিধি ও নিয়ম পালন করার জন্য প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের আদেশ করছেন| তোমাদের সমস্ত মন ও প্রাণ দিয়ে সে সকল পালন করার ব্যাপারে যত্ন নিও| 17 আজ তোমরা প্রভুকে তোমাদের ঈশ্বর বলে স্বীকার করেছ এবং তাঁর ইচ্ছানুসারে জীবনযাপন করার প্রতিজ্ঞা করেছ| তোমরা তাঁর শাসন মেনে চলার ও তাঁর বিধি, আজ্ঞা পালন করার প্রতিজ্ঞা করেছ| তিনি তোমাদের যা বলেন সেই অনুসারে কাজ করার কথাও বলেছ| 18 আর আজ প্রভু ও এই অঙ্গীকার করছেন| তিনি য়েমন প্রতিজ্ঞা করেছেন সেই মত তোমরা হবে তাঁর নিজস্ব প্রজা| তিনি আরও বলেছেন য়ে তাঁর সকল আজ্ঞাগুলির প্রতি তোমরা অবশ্যই বাধ্য থাকবে| 19 এবং প্রভু তাঁর সৃষ্ট সমস্ত জাতির মধ্যে প্রশংসা, য়শ ও সম্মানের দিক থেকে তোমাকে শ্রেষ্ঠ করবেন| আর প্রভু য়েরকম বলেছেন সেই ভাবেই তুমি তাঁর পবিত্র প্রজা হবে|’
1 মোশি এবং ইস্রায়েলের প্রবীণরা লোকদের এই আজ্ঞা করে বললেন, “আজ আমি তোমাদের য়ে আজ্ঞা দিই তার সব পালন করবে| 2 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন, য়ে দিন যর্দন নদী পার হয়ে তোমরা সেই দেশে প্রবেশ করবে সেদিন অবশ্যই তোমরা বড় পাথরের চাঁই স্থাপন করে তাতে প্রলেপ দেবে| 3 তারপর এই পাথরগুলির উপর এই সমস্ত আজ্ঞা অবশ্যই লিখবে| যর্দন নদী পার হলে তোমরা অবশ্যই এই কাজ করবে| তারপর প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশে প্রবেশ করবে| সেই দেশ অনেক উত্তম দ্রব্য়ে পরিপূর্ণ| প্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বর, এই দেশ দেবেন বলেই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| 4 “এবল পর্বতে দাঁড়িয়ে আজ আমি পাথর স্থাপনের বিষয়ে তোমাদের য়ে আদেশ দিচ্ছি, যর্দন নদী পার হলে তোমরা অবশ্যই তা পালন করবে| সেই সব পাথরে তোমরা অবশ্যই চুন লেপবে| 5 আর সেখানে তোমরা পাথর দিয়ে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের জন্য এক বেদী নির্মাণ করবে| সেই পাথরগুলি কাটতে লোহার য়ন্ত্রপাতি ব্যবহার করবে না| 6 প্রভু, তোমার ঈশ্বরের, উদ্দেশ্যে বেদী নির্মাণ করার সময় কেটে সাইজ করা পাথর ব্যবহার করবে না| সেই বেদীর উপরে প্রভু, তোমার ঈশ্বরের, উদ্দেশ্যে হোমবলি উত্সর্গ করবে| 7 এবং সেই খানে তোমরা অবশ্যই বলি হিসেবে মঙ্গল নৈবেদ্য দান করবে এবং সেই খানেই তা খাবে| সেখানে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের সামনে তুমি আনন্দ করবে| 8 “তোমরা য়ে পাথর স্থাপন করেছ তাতে অবশ্যই এই সমস্ত শিক্ষা লিখবে| সেগুলো স্পষ্ট ভাবে লিখো যাতে সহজে পড়া যায়|” 9 মোশি এবং যাজকরা ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে কথা বললেন, “হে ইস্রায়েল, শান্ত হয়ে শোন| আজ তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের প্রজা হলে| 10 সুতরাং প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যা যা বলেন তার সমস্তই পালন করো| আমি আজ তাঁর য়ে সব আজ্ঞা ও বিধি আদেশ করছি তা অবশ্যই পালন করবে|” 11 সেই একই দিনে মোশি লোকদের বললেন, 12 “তোমরা যর্দন নদী পার হলে পরে শিমিযোন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর, য়োষেফ ও বিন্যামীন এই পরিবারগোষ্ঠীগুলির লোকদের বিধিপুস্তক থেকে আশীর্বাদ পড়ার জন্য গরিষীম পাহাড়ে দাঁড়াবে| 13 আর রূবেণ, গাদ, আশের, সবুলূন, দান ও নপ্তালি এই পরিবারগোষ্ঠীগুলি বিধিপুস্তক থেকে শাপ পড়ার জন্য এবল পর্বতে দাঁড়াবে| 14 “আর লেবীয়রা সমস্ত ইস্রায়েলীয়কে জোরে চিত্কার করে বলবে: 15 ‘য়ে কেউ মূর্ত্তি তৈরী করে এবং সেগুলি গোপন জায়গায় রাখে, সেই অভিশপ্ত হয়| ঐ মূর্ত্তিগুলি শিল্পীর দ্বারা খোদিত বা ছাঁচে ঢালা মূর্ত্তি ছাড়া আর কিছুই নয়| প্রভু এগুলিকে ঘৃণা করেন|’ তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 16 “লেবীয়রা বলবে, ‘পিতামাতাকে য়ে কেউ অসম্মান করে সে শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 17 ‘লেবীয়রা বলবে, ‘য়ে ব্যক্তি প্রতিবেশীর জমির চিহ্ন স্থানান্তর করে সে শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 18 “লেবীয়রা বলবে, ‘য়ে ব্যক্তি কোন অন্ধকে ভুল পথে চালায সে শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 19 “লেবীয়রা বলবে, ‘য়ে ব্যক্তি বিদেশী, অনাথ এবং বিধবার সুবিচার করে না সে শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 20 “লেবীয়রা বলবে, ‘পিতার স্ত্রীর অর্থাত্ সত্ মাযের সাথে য়ৌন সম্পর্ক করে এমন য়ে কোন ব্যক্তি শাপগ্রস্ত|’ কারণ এই ভাবে সে তার পিতাকে অসম্মান করেছে!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 21 “লেবীয়রা বলবে, ‘য়ে কোন ধরণের পশুর সাথে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত ব্যক্তি শাপগ্রস্ত!’ তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 22 “লেবীয়রা বলবে, ‘য়ে ব্যক্তি তার বোনের সাথে অর্থাত্ তার পিতা অথবা মাতার কন্যার সাথে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় সে শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 23 “লেবীয়রা বলবে, ‘শাশুড়ীর সাথে য়ৌন সম্পর্ক রয়েছে এমন য়ে কোন ব্যক্তি শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 24 “লেবীয়রা বলবে, ‘গোপনে প্রতিবেশীকে হত্যা করে এমন ব্যক্তি শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 25 “লেবীয়রা বলবে, ‘নির্দোষ ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য টাকা নেয়, এমন য়ে কোন ব্যক্তি শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’ 26 “লেবীয়রা বলবে, ‘কোন ব্যক্তি য়ে এই ব্যবস্থার কথা সমর্থন না করে এবং তা পালন করতে সম্মত না হয়, সে শাপগ্রস্ত!’ “তখন সমস্ত লোক উত্তরে বলবে, ‘আমেন!’
1 “আমি আজ তোমাদের য়ে সকল আদেশ করছি, তোমরা যদি প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, সেই সব আজ্ঞা যত্নের সাথে পালন কর তবে প্রভু তোমার ঈশ্বর পৃথিবীর সমস্ত জাতির উপরে তোমাদের উন্নত করবেন| 2 যদি তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, বাধ্য হও তবে এইসব আশীর্বাদ তোমাদের উপরে আসবে: 3 “প্রভু তোমাদের নগরে এবং তোমাদের ক্ষেতে আশীর্বাদ করবেন| 4 প্রভু তোমাদের গর্ভের ফল আশীর্বাদযুক্ত করবেন| তিনি তোমাদের জমিকে আশীর্বাদ করবেন যাতে ভালো ফসল হয়| তিনি তোমাদের পশুদের আশীর্বাদ করবেন যাতে তাদের বহু শাবক জন্মায়| তিনি তোমাদের গরু ও মেষদের আশীর্বাদ করবেন| 5 প্রভু তোমাদের ঝুড়িগুলি ও পাত্রগুলিকে আশীর্বাদ করবেন এবং তা খাবারে ভরে দেবেন| 6 তোমরা যা কিছু কর তাতেই সর্বসময়ে প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করবেন| 7 “তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছে এমন শত্রুকে পরাস্ত করতে প্রভু তোমাদের সাহায্য করবেন| তোমাদের শত্রুরা তোমাদের বিরুদ্ধে এক পথ দিয়ে আসবে কিন্তু পালাবার সময় সাত পথ দিয়ে পালাবে! 8 “প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করবেন ও তোমাদের গোলাঘর পূর্ণ করবেন| তোমরা যা কিছু কর তাতে তিনি আশীর্বাদ করবেন| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের য়ে দেশ দিচ্ছেন, সেখানে তোমাদের আশীর্বাদ করবেন| 9 তিনি য়েমন প্রতিজ্ঞা করেছেন সেই অনুসারেই তিনি তোমাদের তাঁর নিজের বিশিষ্ট ব্যক্তি করে তুলবেন| তুমি যদি প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের সমস্ত আজ্ঞা পালন কর তাহলেই তিনি তা করবেন| 10 তাহলে পৃথিবীর সমস্ত জাতি জানবে য়ে তোমরা প্রভুর নামে অভিহিত এবং তারা তোমাদের ভয় করবে| 11 “আর প্রভু তোমাদের অনেক উত্তম বিষয় দেবেন| তিনি তোমাদের বহু সন্তানের পিতা করবেন এবং তোমাদের পশুর সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে অনেক হবে| য়ে দেশ তোমাদের দেবেন বলে তোমাদের পূর্বপুরুষের কাছে প্রভু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই দেশে তোমাদের ভাল ফসল দেবেন| 12 প্রভু তাঁর মহান আশীর্বাদের ভাণ্ডার খুলে দেবেন| তিনি তোমাদের জমির জন্য উপযুক্ত সময়ে বৃষ্টি দেবেন| প্রভু তোমাদের সমস্ত কাজে আশীর্বাদ করবেন| অনেক জাতিকে তোমরা ধার দেবে কিন্তু তাদের কাছ থেকে তোমাদের ধার করার প্রযোজন হবে না| 13 প্রভু তোমাদের মস্তক স্বরূপ করবেন, পুচ্ছ স্বরূপ করবেন না| তোমরা অবনত না হয়ে উন্নত হবে| এই সমস্তই ঘটবে যদি প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, য়ে সব আদেশ আমি আজ বলছি তা তোমরা শোন এবং যত্ন সহকারে এই সব আদেশ পালন করো| 14 আজ আমি তোমাদের য়ে সব আজ্ঞা দিচ্ছি তার থেকে দূরে সরে য়েও না| তোমরা তার ডান দিকে বা বাম দিকে ফিরে য়েও না| সেবা করার জন্য অন্য দেবতার অনুগামী হয়ো না| 15 “কিন্তু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, কথা যদি না শোন - তিনি যা আদেশ করছেন, আমার আজকের বলা সেইসব আদেশ যত্ন সহকারে পালন না কর তবে এই সমস্ত অভিশাপ তোমার প্রতি বর্তাবে: 16 “প্রভু তোমাদের নগরে এবং ক্ষেতে শাপ দেবেন| 17 প্রভু তোমাদের ঝুড়ি ও পাত্র শাপগ্রস্ত করবেন এবং তাদের মধ্যে কোন খাদ্য থাকবে না| 18 প্রভু তোমাদের সন্তানসন্ততিদের, তোমাদের জমিকে, তোমাদের পশুদের এবং তোমাদের গাভীন গাই ও মেষদের শাপ দেবেন| 19 তোমরা যা কিছু কর না কেন সব সময় প্রভু তাতে শাপ দেবেন| 20 “তোমরা যা কিছু করবে তাতেই অভিশাপ, হতাশা এবং কষ্ট আসবে| তোমরা দ্রুত সম্পূর্ণরূপে বিনাশ না হওয়া পর্য়ন্ত তিনি এসব করেই চলবেন| তিনি এসব করবেন কারণ তোমরা যা মন্দ তাই কর এবং তাঁকে পরিত্যাগ করেছ| 21 য়ে দেশ অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছ সেখানে ধ্বংস না হওয়া পর্য়ন্ত প্রভু তোমাদের ভযানক সব রোগে রোগগ্রস্ত করবেন| 22 প্রভু রোগ, জ্বর এবং ফোলা দ্বারা তোমাদের শাস্তি দেবেন| প্রভু প্রচণ্ড উত্তাপ পাঠাবেন এবং কোন বৃষ্টি পড়বে না| উত্তাপে এবং রোগে তোমাদের ফসল নষ্ট হয়ে যাবে| তোমরা ধ্বংস না হওয়া পর্য়ন্ত এই খারাপ ঘনাগুলি ঘটতেই থাকবে! 23 আকাশে কোন মেঘ দেখা যাবে না - আকাশ ঘসা পিতলের মতো এবং পাযের নীচের জমি লোহার মত শক্ত হবে| 24 প্রভু বৃষ্টির পরিবর্তে আকাশ থেকে কেবল ধূলো বালি বর্ষণ করবেন| য়ে পর্য়ন্ত তোমাদের বিনাশ না হয় তিনি তা বর্ষণ করবেন| 25 “প্রভু তোমাদের শত্রুদের দিয়ে তোমাদের হারাবেন| তোমরা এক পথ দিয়ে তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাবে কিন্তু সাত পথ দিয়ে তাদের সামনে থেকে পালাবে| তোমাদের প্রতি য়ে সব খারাপ বিষয় ঘটবে তা দেখে পৃথিবীর লোক ভয় পাবে| 26 তোমাদের মৃতদেহ বন্য পশুপাখীর খাদ্য হবে| মৃত দেহের উপর থেকে তাদের তাড়িয়ে দেবারও কেউ থাকবে না| 27 28 “প্রভু মিশরীয়দের কাছে য়েমন ফোড়া পাঠিয়েছিলেন সেই রকমটি দিয়েই তোমাদের শাস্তি দেবেন| তিনি আর, গলিত ঘা এবং সারে না এমন চুলকানি দিয়ে তোমাদের শাস্তি দেবেন| প্রভু উন্মাদনা দ্বারা তোমাদের শাস্তি দেবেন| তিনি তোমাদের অন্ধ এবং হতবুদ্ধি করবেন| 29 দিনের আলোয হাতড়ে হাতড়ে অন্ধ লোকর মত তোমাদের পথ চলতে হবে| তোমরা যা কিছু কর তাতে অসফল হবে| বার বার লোক তোমাদের আঘাত করবে এবং তোমাদের জিনিস চুরি করে নেবে| আর তোমাদের রক্ষা করার কেউ থাকবে না| 30 “তোমাদের সাথে কোন স্ত্রীলোক বাগ্দত্তা হবে কিন্তু অপর কেউ তার সাথে য়ৌন সম্পর্কে লিপ্ত হবে| তোমরা বাড়ী বানাবে কিন্তু তাতে বাস করতে পারবে না| তোমরা ক্ষেতে দ্রাক্ষা লাগাবে কিন্তু তার থেকে কোন কিছুই সংগ্রহ করতে পারবে না| 31 লোক তোমাদের সামনেই তোমাদের গরুগুলো মেরে ফেলবে কিন্তু সেই মাংসের কোন অংশই তুমি খেতে পাবে না| লোক তোমাদের গাধাদের নিয়ে যাবে কিন্তু ফেরত দেবে না| তোমাদের মেষ তোমাদের শত্রুদের দেওয়া হবে| তোমাদের রক্ষা করার জন্য কেউ থাকবে না| 32 “অন্য জাতির লোকরা তোমাদের ছেলে মেয়েদের তুলে নিয়ে যাবে| দিনের পর দিন তাদের অপেক্ষায চেয়ে চেয়ে তুমি ক্লান্ত হয়ে পড়বে কিন্তু কিছুই করতে পারবে না এবং ঈশ্বর তোমাদের সাহায্য করবেন না| 33 “য়ে জাতিকে তোমরা চেনো না তারা তোমাদের সব শস্য এবং তোমাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল খেযে ফেলবে| তোমরা কেবল সমস্ত জীবন ধরে পীড়ন ও লাঞ্ছনা ভোগ করবে| 34 তোমাদের চোখ যা দেখবে তা তোমাদের উন্মত্ত করবে! 35 প্রভু তোমাদের এমন কষ্টকর ফোঁড়া দ্বারা শাস্তি দেবেন যা সারে না| তোমাদের হাঁটু এবং পাযে এই সব ফোঁড়া হবে| পাযের তলা থেকে মাথার তালু পর্য়ন্ত দেহের সব জায়গাতেই এই ফোঁড়া বের হবে| 36 “প্রভু তোমাদের এবং তোমাদের রাজাকে এমন জাতির কাছে পাঠাবেন যাদের তুমি জান না| তুমি এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরাও কখনও তাদের দেখে নি| সেখানে তোমরা কাঠ ও পাথরের তৈরী মূর্ত্তির সেবা করবে| 37 প্রভু তোমাদের য়ে দেশগুলিতে পাঠাবেন, সেখানকার লোক তোমাদের দুর্দশা দেখে অবাক হবে| তারা তোমাদের দেখে হাসবে এবং তোমাদের সম্বন্ধে মন্দ কথা বলবে| 38 “তোমাদের ক্ষেতে তুমি বহু বীজ বুনবে কিন্তু অল্পই ফসল সংগ্রহ করবে, কারণ পঙ্গপাল ফসল খেযে ফেলবে| 39 তোমরা দ্রাক্ষা ক্ষেতে কষ্ট করে দ্রাক্ষা চাষ করবে কিন্তু দ্রাক্ষা সংগ্রহ বা দ্রাক্ষারস পান করতে পাবে না, কারণ পোকায তা খেযে ফেলবে| 40 তোমাদের দেশের সর্বত্র জলপাইযের গাছ থাকবে কিন্তু তার থেকে উত্পন্ন কোন তেল তুমি ব্যবহার করতে পারবে না| কারণ জলপাই ফল মাটিতে ঝরে পড়ে পচে যাবে| 41 তোমাদের ছেলেমেয়ে থাকলেও তাদের লালন পালন করতে পারবে না, কারণ তাদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে| 42 পঙ্গপাল তোমাদের সমস্ত গাছ ও ক্ষেতের শস্য ধ্বংস করে দেবে| 43 তোমাদের মধ্যে বাসকারী বিদেশীরা দিনে দিনে শক্তিশালী হয়ে উঠবে আর তোমাদের যা শক্তি ছিল তা তোমরা হারাবে| 44 বিদেশীরা তোমাদের ধার দেবে, কিন্তু তাদের ধার দেবার মত টাকা তোমাদের কাছে থাকবে না| মাথা য়েমন দেহকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, সেই রকম ভাবেই তারা মাথা হয়ে তোমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখবে আর তুমি হবে লেজ বিশেষ| 45 “এই সমস্ত শাপ তোমাদের উপর আসবে| তারা তোমাদের ধাওযা করে ধরবে য়ে পর্য়ন্ত না তুমি ধ্বংস হও, কারণ তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, কথা শোন নি| তিনি তোমাদের য়ে সমস্ত আজ্ঞা ও বিধি দিয়েছিলেন তা পালন করো নি| 46 এই শাপগুলি হবে লোকদের কাছে একটি চিহ্ন এবং তারা বুঝবে য়ে ঈশ্বর তোমাদের এবং তোমাদের উত্তরপুরুষদের বিচার করেছেন| তোমাদের ওপর য়ে ভয়ঙ্কর ঘনাগুলি ঘটবে তা দেখে লোকে আশ্চর্য় হয়ে যাবে| 47 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের অনেক আশীর্বাদ করেছিলেন, কিন্তু তোমরা আনন্দের সাথে প্রফুল্ল মনে তাঁর সেবা করো নি| 48 তাই প্রভু তোমাদের বিরুদ্ধে য়ে শত্রুদের পাঠাবেন তোমরা তাদেরই সেবা করবে| তোমরা ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত, উলঙ্গ এবং দরিদ্র হবে| প্রভু তোমাদের উপর এমন বোঝা চাপাবেন যা সরিয়ে ফেলা যাবে না| তোমাদের ধ্বংস না করা পর্য়ন্ত তুমি সেই বোঝা বইবে| 49 “তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য প্রভু বহু দূর থেকে এক জাতির আগমণ ঘটাবেন| তোমরা তাদের ভাষা বুঝবে না| ঈগল পাখী য়েমন আকাশ থেকে নেমে আসে তেমনি দ্রুত তারা আসবে| 50 সেই সব লোক নিষ্ঠুর হবে| তারা বৃদ্ধদের বিষয়ে কোন চিন্তা করবে না এবং শিশুদের প্রতিও দযা করবে না| 51 তারা তোমাদের পশু ও উত্পন্ন খাদ্য নিয়ে নেবে| তোমাদের ধ্বংস না করা পর্য়ন্ত তারা তোমাদের সর্বস্ব নিয়ে যাবে| তারা তোমাদের শস্য, দ্রাক্ষারস, তেল, গরু, মেষ ও ছাগলের কিছুই ছেড়ে যাবে না| তোমাদের ধ্বংস না করা পর্য়ন্ত তারা তোমাদের সর্বস্ব নিয়ে যাবে| 52 “সেই জাতি তোমাদের নগরের চারিদিক ঘিরে তোমাদের আক্রমণ করবে| তোমরা কি মনে করছ নগরের চারিধারের শক্ত উঁচু প্রাচীর তোমাদের রক্ষা করবে? কিন্তু তারা ভেঙ্গে পড়বে| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, দেওয়া সেই দেশের সর্বত্র সমস্ত নগরগুলি শত্রুরা আক্রমণ করবে| 53 শত্রুরা নগর অবরোধ করে তোমাদের কষ্ট দিলে তুমি এতই ক্ষুধার্ত হবে য়ে নিজের ছেলে মেয়েদের খেতে শুরু করবে - প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, য়ে সন্তানদের দিয়েছিলেন তুমি তাদের দেহ ভোজন করবে| 54 “এমনকি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে দযালু এবং শান্ত লোকটিও নিষ্ঠুর হয়ে উঠবে| সে অন্যের প্রতি নিষ্ঠুর হবে| এমনকি, য়ে স্ত্রীকে সে অত্যন্ত ভালবাসে তার প্রতিও নিষ্ঠুর হবে এবং জীবিত শিশুদের প্রতিও সে নিষ্ঠুর হবে| 55 খাবার কিছু পড়ে না থাকর দরুণ সে নিজের শিশুদের খাবে এবং সেই মাংস সে পরিবারের অন্য কারও সাথে ভাগ না করে নিজেই খাবে| তোমাদের শত্রু এসে তোমাদের নগর অবরোধ করলে এই সমস্ত মন্দ ঘনাগুলি তোমাদের প্রতি ঘটবে এবং তোমাদের কষ্ট দেবে| 56 “এমনকি তোমাদের মধ্যে বাসকারী কোমল ও ভদ্র মহিলা, মাটিতে যার পা পড়ে না, সেও নিষ্ঠুর হয়ে উঠবে| তার প্রাণের প্রিয স্বামীর প্রতি এবং নিজের ছেলেমেয়ের প্রতিও সে নিষ্ঠুর হয়ে উঠবে| 57 সে লুকিয়ে শিশুর জন্ম দিয়ে সেই শিশুটিকে এবং তার সাথে জন্ম দেবার সময় তার দেহ থেকে যা কিছু বেরিয়ে আসে তাও খাবে| শত্রু এসে তোমাদের শহর অবরোধ করে তোমাদের সংকটে ফেললে এই সমস্ত মন্দ বিষয় তোমাদের প্রতি ঘটবে| 58 “এই বইতে লেখা সমস্ত আজ্ঞা ও শিক্ষা তুমি অবশ্যই পালন করো এবং তুমি অবশ্যই প্রভু, তোমার ঈশ্বরের, গৌরবান্বিত এবং ভযাবহ নামকে সম্মান করো| 59 যদি তোমরা তা পালন না কর তবে প্রভু তোমাদের এবং তোমাদের উত্তরপুরুষদের অনেক অসুবিধায ফেলবেন| তোমাদের সংকট ও রোগগুলি হবে ভযানক! 60 মিশরে তোমরা অনেক বিপত্তি ও রোগ দেখে ভীত হয়েছিলে| প্রভু ঐ সব মন্দ ঘনাগুলি তোমাদের বিরুদ্ধে ফিরিয়ে আনবেন| 61 এই পুস্তকে লেখা নেই এমন সব সংকট ও রোগও তিনি আনবেন| তোমরা ধ্বংস না হওয়া পর্য়ন্ত তিনি তা করেই চলবেন| 62 আকাশের তারার মত তোমাদের বংশধররা বহুসংখ্যক হতে পারে, কিন্তু কেবল অল্পসংখ্যকই অবশিষ্ট থাকবে, কারণ তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের কথা শোন নি| 63 “প্রভু তোমাদের মঙ্গল করে ও তোমাদের জাতির বৃদ্ধি সাধন করে য়েমন আনন্দ পেতেন, সেই একই ভাবে তিনি তোমাদের সর্বনাশ ও ধ্বংস দেখে আনন্দ পাবেন| তুমি য়ে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, লোক তোমাদের সেই দেশ থেকে বের করে দেবে| 64 আর প্রভু পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্য়ন্ত সমস্ত জাতির মধ্যে তোমাদের ছড়িয়ে দেবেন| সেখানে তোমরা কাঠ, পাথরের তৈরী এমন মূর্ত্তির পূজা করবে, যাদের পূজা তোমাদের পূর্বপুরুষরা কখনও করে নি| 65 “এই সমস্ত জাতির মধ্যে তোমরা কোন শান্তি পাবে না এবং বিশ্রামের জায়গাও পাবে না| প্রভু তোমাদের মন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করবেন| তখন তোমাদের চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়বে এবং তোমরা বিচলিত হয়ে পড়বে| 66 তোমরা বিপদের মধ্যে বাস করবে এবং দিনে কি রাতে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকবে| জীবন সম্বন্ধে তোমাদের কোন নিশ্চয়তা বোধ থাকবে না| 67 সকালে তুমি বলবে, ‘হায়! কখন সন্ধ্যা হবে!’ আর সন্ধ্যা হলে বলবে, ‘হায়! কখন সকাল হবে!’ হৃদয়ের শঙ্কা এবং ভয়ঙ্কর বিষয় যা তোমরা দেখবে, তার জন্যই এইরকম হবে| 68 প্রভু জাহাজে করে তোমাদের মিশরে ফেরত পাঠাবেন| আমি বলেছিলাম য়ে তোমাদের আর সেখানে ফিরে য়েতে হবে না; কিন্তু প্রভু তোমাদের সেখানে ফেরত পাঠাবেন| মিশরে তোমরা তোমাদের শত্রুদের কাছে নিজেদের দাসরূপে বিক্রি করতে চাইবে কিন্তু কেউ তোমাদের কিনবে না|”
1 প্রভু হোরেব পর্বতে ইস্রায়েলের লোকদের সাথে চুক্তি করেছিলেন| সেই চুক্তি ছাড়াও প্রভু মোশিকে আরেকটি চুক্তি করার জন্য আজ্ঞা করলেন| এই চুক্তি মোয়াব পর্বতে করা হল: 2 মোশি সমস্ত ইস্রায়েলের লোকদের এক জায়গায় একত্র করে বললেন, “মিশর দেশে প্রভু যা করেছিলেন তার সবই তোমরা দেখেছিলে| ফরৌণের প্রতি তার কর্মচারী ও তার সমস্ত দেশের প্রতি প্রভু যা করেছিলেন, তা তোমরা দেখেছ| 3 তিনি তাদের উপর য়ে মহা কষ্ট এনেছিলেন তা তোমরা দেখেছ| তোমরা সমস্ত অলৌকিক ও মহা আশ্চর্য় কাজও দেখেছ য়েগুলি তিনি করেছেন| 4 তোমরা যা শুনেছ বা দেখেছ তা দেখার চোখ ও প্রকৃতভাবে বুঝে উঠার মন আজও প্রভু তোমাদের দেননি| 5 প্রভু এই 40 বছর তোমাদের মরুভূমির মধ্য দিয়ে নিয়ে গেছেন| এই সময়ের মধ্যে তোমাদের কাপড় জামা ও জুতো ছিঁড়ে যায় নি| 6 তোমাদের কোন খাবার ছিল না| সুরা বা অন্য কোন পানীয় ছিল না| কিন্তু প্রভু তোমাদের যত্ন নিলেন যাতে তোমরা বুঝতে পার য়ে প্রভুই তোমাদের ঈশ্বর| 7 “তোমরা এই স্থানে আসার পরে হিষ্বোনের রাজা সীহোন ও বাশনের রাজা ওগ আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এলো| কিন্তু আমরা তাদের হারিযে দিলাম| 8 তারপর আমরা তাদের দেশ অধিকার করে তা রূবেণ, গাদ ও মনঃশির অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের দিয়ে দিয়েছিলাম| 9 এই চুক্তির সমস্ত আদেশগুলি যদি তোমরা পালন কর, তবে তোমরা যা কিছু কর, তাতেই কৃতকার্য় হবে| 10 “আজ তোমরা সবাই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, সামনে দাঁড়িয়ে রযেছ| তোমাদের নেতারা, কর্মকর্তারা, প্রবীণরা এবং তোমাদের অন্যান্যরাও এখানেই রয়েছে| 11 তোমাদের স্ত্রী ও শিশুরা, তোমাদের মধ্যে বাসকারী বিদেশীরা যারা তোমাদের জন্য কাঠ কেটে দেয় ও জল তুলে দেয় তারাও এখানে রয়েছে| 12 তোমরা সকলে এখানে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, সাথে চুক্তিবদ্ধ হবার জন্য রযেছ| প্রভু আজ তোমাদের সাথে এই আশীর্বাদ ও অভিশাপের চুক্তি করেছেন| 13 এই চুক্তির সাথে সাথেই প্রভু তোমাদের তাঁর নিজস্ব বিশেষ লোক করবেন এবং তিনি তোমাদের ঈশ্বর হবেন| তিনি তোমাদের যা বললেন তার প্রতিজ্ঞা তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইসহাক ও যাকোবের কাছে করেছিলেন| 14 প্রভু এই চুক্তি ও তাঁর প্রতিজ্ঞাসকল কেবল তোমাদের সাথেই করছেন না| 15 এই চুক্তি তিনি আমরা যারা সকলে তাঁর সামনে আজ দাঁড়িয়ে আছি তাদের সঙ্গে এবং আমাদের উত্তরপুরুষরা যারা আজ এখানে নেই তাঁদের সাথেও করছেন| 16 স্মরণ কর মিশর দেশে আমরা কেমন ভাবে বাস করেছি এবং পথে য়ে সব দেশ পড়েছে তার মধ্যে দিয়ে কি ভাবে যাত্রা করেছি| 17 তোমরা ঘৃণিত মূর্ত্তিগুলি দেখেছ - য়ে মূর্ত্তিগুলি কাঠ, পাথর, সোনা ও রূপা দিয়ে তৈরী| 18 এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ো য়ে তোমাদের মধ্যে পুরুষ, নারী, পরিবার ও পরিবারগোষ্ঠী যারাই আজ এখানে রয়েছে, তাদের কেউ য়েন প্রভু আমাদের ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরে না যায়| কেউ য়েন অন্য জাতির দেবতাদের পূজা না করে| যারা তা করে তারা সেই গাছের মত যা বিষাক্ত তেতো ফল উত্পন্ন করে| 19 “কোন ব্যক্তি এই সমস্ত শাপের কথা শুনেও নিজের মনকে সন্তুষ্ট করতে বলতে পারে, ‘আমি যা চাই তাই করব| খারাপ কিছুই আমার প্রতি ঘটবে না|’ এই ধরণের লোক য়ে কেবল তার নিজের প্রতি অমঙ্গল ডেকে আনবে তা নয়, এমনকি ভাল লোকদের প্রতিও তা ডেকে আনবে| 20 প্রভু সেই ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন না| প্রভু সেই ব্যক্তির প্রতি ক্রুদ্ধ ও বিরক্ত হবেন এবং তাকে শাস্তি দেবেন| প্রভু সেই ব্যক্তিকে ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী থেকে পৃথক করবেন| প্রভু তাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবেন| এই পুস্তকে লেখা সমস্ত অমঙ্গল তার উপর আসবে| ব্যবস্থার পুস্তকে অভিশাপ সম্পর্কে লিখিত চুক্তি অনুসারেই আসবে| 21 22 “ভবিষ্যতে তোমাদের উত্তরপুরুষরা ও দূর দেশের বিদেশীরা দেখবে কিভাবে এই দেশ ধ্বংস হয়েছে| প্রভু কিভাবে বিভিন্ন রোগ এনেছেন তাও তারা দেখবে| 23 সমস্ত দেশ জ্বলন্ত গন্ধক ও লবনে ঢেকে যাওয়ায় আর ব্যবহারয়োগ্য থাকবে না| দেশে কিছুই বোনা হবে না, কিছুই বেড়ে উঠবে না, এমন কি জংলী গাছও না| প্রভু ক্রুদ্ধ হয়ে য়েভাবে সদোম, ঘমোরা, অদ্মা ও সবোযিম শহরগুলি ধ্বংস করেছিলেন সেই ভাবেই এই দেশ ধ্বংস হবে| 24 “অন্যান্য সব জাতির লোকরা জিজ্ঞেস করবে, ‘প্রভু এই দেশের প্রতি কেন এমনটি করলেন? কেন তিনি এত ক্রুদ্ধ হলেন?’ 25 উত্তর এই হবে, ‘প্রভু ক্রুদ্ধ কারণ ইস্রায়েলের লোকরা তাদের প্রভুর অর্থাত্ পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের নিয়ম ত্যাগ করেছে| প্রভু তাদের মিশর দেশ থেকে বের করে আনার সময় য়ে চুক্তি করেছিলেন তা তারা আর পালন করে না| 26 প্রভু য়ে সমস্ত দেবতার পূজা করতে নিষেধ করেছিলেন, যাদের পূজা তারা আগে কখনও করে নি, ইস্রায়েলের লোকরা সেই অন্যান্য দেবতার সেবা করেছে| 27 সেই কারণেই প্রভু এই দেশের লোকদের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন| আর তাই তিনি পুস্তকে লেখা সমস্ত অভিশাপ তাদের উপর আনলেন| 28 প্রভু তাদের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ ও বিরক্ত হলেন, তাই তিনি তাদের দেশ থেকে বের করে দিয়ে অন্য এক দেশে রাখলেন, সেখানেই আজ তারা রয়েছে|’ 29 “কিছু বিষয় রয়েছে যা প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, গোপন রেখেছেন, কেবল তিনিই সে সব বিষয় জানেন| কিন্তু প্রভু কিছু বিষয় আমাদের কাছে প্রকাশ করেছেন এবং সেই শিক্ষাসকল আমাদের ও আমাদের উত্তরপুরুষদের জন্য চিরকাল থাকবে| সেই বিধির সব আজ্ঞাগুলির প্রতি আমরা অবশ্যই বাধ্য থাকব|
1 “আমি তোমাদের আশীর্বাদ ও অভিশাপ সম্বন্ধে যা যা বললাম সেই সব যখন তোমাদের ওপর ঘটবে এবং প্রভু তোমাদের য়ে সব বিভিন্ন জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন, সেখানে যদি এই সব বিষয়ে চিন্তা করে 2 তুমি ও তোমার সন্তানরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, কাছে ফিরে আসো অর্থাত্ যদি তোমরা তাঁকে তোমাদের সমস্ত হৃদয় এবং সমস্ত আত্মা দিয়ে অনুসরণ কর এবং তাঁর সব আজ্ঞাগুলি - যা কিছু আমি আজ দিয়েছি, তোমরা সেগুলির প্রতি সম্পূর্ণভাবে বাধ্য থাক, 3 তবে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের প্রতি করুণা করবেন| প্রভু আবার তোমাদের মুক্ত করবেন| তিনি তোমাদের য়ে সব জাতির মধ্যে পাঠিয়ে ছিলেন সেখান থেকে আবার ফিরিয়ে আনবেন| 4 এমন কি তোমরা যদি পৃথিবীর দূরতম প্রান্তেও গিয়ে থাকো, প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, সেখান থেকে তোমাদের সংগ্রহ করবেন| 5 তোমাদের পূর্বপুরুষদের য়ে দেশ ছিল, প্রভু সেই দেশে তোমাদের ফিরিয়ে আনবেন এবং সেই দেশ তোমাদের অধিকারে আসবে| প্রভু তোমাদের মঙ্গল করবেন এবং পূর্বপূরুষদের চাইতেও তোমাদের অধিক হবে| তোমাদের জাতির লোকসংখ্যা এমন বৃদ্ধি পাবে যা আগে কখনও হয় নি| 6 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমার এবং তোমাদের উত্তরপুরুষদের হৃদয় বাধ্য করে তুলবেন| এই ভাবে তোমাদের প্রভুকে সমস্ত হৃদয়ের সাথে প্রেম করে জীবন লাভ করবে| 7 “আর তখন প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, শত্রুদের প্রতি সেই সমস্ত অমঙ্গল ঘটাবেন, কারণ এই সমস্ত লোকরা তোমাদের ঘৃণা করে ও কষ্ট দেয়| 8 আর তোমরা আবার প্রভুর বাধ্য হবে| আমি আজ তাঁর য়ে সমস্ত আদেশ দিচ্ছি তা পালন করবে| 9 তোমরা য়ে কাজে হাত দেবে তাতেই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের কৃতকার্য় হতে দেবেন| তাঁর আশীর্বাদে তোমরা বহু সন্তানসন্ততি লাভ করবে| তাঁর আশীর্বাদে তোমাদের পশুদেরও অনেক শাবক হবে| তিনি তোমাদের ক্ষেতকে আশীর্বাদ করবেন, ফলে অনেক ফসল উত্পন্ন হবে| প্রভু তোমাদের মঙ্গল করবেন| তোমাদের পূর্বপুরুষদের মঙ্গল সাধন করে তিনি য়ে রকম আনন্দ পেতেন, সেই রকম তোমাদের প্রতি মঙ্গল সাধন করে তিনি আনন্দ পাবেন| 10 কিন্তু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, আজ যা বলছেন তা অবশ্যই পালন করতে হবে| তোমরা অবশ্যই তাঁর আজ্ঞাসকল এবং ব্যবস্থাপুস্তকে লেখা বিধিগুলো পালন করবে| তোমরা অবশ্যই তোমাদের হৃদয় ও প্রাণের সাথে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের বাধ্য হবে| তাহলে তোমাদের প্রতি এইসব মঙ্গল কার্য়্য় ঘটবে| 11 “এই আজ্ঞা যা আজ আমি তোমাদের দিচ্ছি তা তোমাদের পক্ষে খুব কঠিন হবে না আর তা সাধ্যের বাইরেও নয়| 12 এই আজ্ঞাগুলি স্বর্গে রেখে দেওয়া হয় নি য়ে তুমি বলবে, ‘কে স্বর্গে গিয়ে তা আমাদের জন্য নিয়ে আসবে যাতে আমরা তা শুনতে পারি এবং মেনে চলি|’ 13 এই আজ্ঞা সমুদ্রের অপর পারেও নেই য়ে তুমি বলবে, ‘কে সমুদ্র পার হয়ে আমাদের জন্য তা নিয়ে আসবে যাতে আমরা তা শুনতে পাই ও সেই মত কাজ করতে পারি|’ 14 না, সে বাক্য় তোমাদের খুব কাছে, তোমাদের মুখে ও হৃদয়ে রয়েছে যাতে তা পালন করতে পার| 15 “আজ জীবন ও মৃত্যু অথবা ভাল ও মন্দের মধ্যে তোমাদের একটি মনোনীত করতে দিয়েছি| 16 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, ভালবাসতে, তাঁকে অনুসরণ এবং তাঁর সমস্ত আজ্ঞা, বিধি ও নিয়মসকল পালন করতে আজ আমি তোমাদের আজ্ঞা করছি| তাহলে তোমরা বাঁচবে এবং তোমাদের জাতি আরও বৃদ্ধি পাবে এবং য়ে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, প্রভু তোমাদের ঈশ্বর সেই দেশে তোমাদের আশীর্বাদ করবেন| 17 কিন্তু যদি তোমরা প্রভুর থেকে তোমাদের হৃদয় ফিরিয়ে নাও এবং তাঁর কথা শুনতে সম্মত না হও, যদি অন্য দেবতার পূজা ও সেবা করার জন্য মনস্থির করে থাক, 18 তাহলে তোমরা ধ্বংস হবে| আমি তোমাদের সাবধান করে দিচ্ছি, যদি তোমরা প্রভুর থেকে হৃদয় ফিরিয়ে নাও তবে যর্দন নদীর অপর পারের য়ে দেশে তোমরা প্রবেশ করার জন্য প্রস্তুত, সেখানে তোমরা দীর্ঘজীবি হবে না| 19 “আজ এই দুই পথের মধ্যে য়ে কোন একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ তোমাদের হয়েছে আর আকাশ ও পৃথিবীকে আমি এই বিষয়ে সাক্ষী রাখছি| তোমরা জীবন বা মৃত্যু বেছে নিতে পারো| প্রথমটি মনোনীত করলে তোমরা আশীর্বাদ পাবে| যদি তোমরা অপরটি মনোনীত কর তাহলে আসবে অভিশাপ| সুতরাং জীবন মনোনীত কর, তাহলে তোমরা এবং তোমাদের সন্তানরা বাঁচবে| 20 তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরকে, ভালবাসবে ও তাঁর বাধ্য হবে| তাঁকে পরিত্যাগ করো না, কারণ প্রভুই তোমাদের জীবন; এবং প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইসহাক এবং যাকোবকে য়ে দেশ দিতে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই দেশে তিনি তোমাদের দীর্ঘজীবি করবেন|”
1 ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের এই সব কথা বলা শেষ হলে, 2 মোশি বললেন, “আমার বযস এখন 120 বছর| আমি আর তোমাদের পরিচালনা করতে পারব না| প্রভু আমায় বলেছেন: ‘তুমি যর্দন নদী পার হয়ে যাবে না|’ 3 কিন্তু প্রভু তোমাদের লোকদের সেই দেশে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবেন| প্রভু তোমাদের জন্য এই সমস্ত জাতিকে ধ্বংস করবেন এবং তোমরা তাদের দেশ ছিনিয়ে নেবে| প্রভুর প্রতিজ্ঞা অনুসারে যিহোশূয় তোমাদের পথ দেখাবেন| 4 “প্রভু সীহোন এবং ওগ এই ইমোরীয় রাজাদের ধ্বংস করে তাদের প্রতি এবং তাদের দেশের প্রতি যা করেছিলেন এদের প্রতিও তাই করবেন| 5 এই সমস্ত জাতিকে হারাতে প্রভু তোমাদের সাহায্য করবেন| কিন্তু আমি তোমাদের যা যা করতে বলি তার সবই তোমরা তাদের প্রতি করো| 6 দৃঢ় এবং সাহসী হও, ঐ সমস্ত লোকদের ভয় পেও না! কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সঙ্গে আছেন| তিনি তোমাদের ছেড়ে যাবেন না বা হতাশ করবেন না|” 7 তখন মোশি সমস্ত ইস্রায়েলের সামনে যিহোশূয়কে ডেকে বললেন, “শক্ত হও, মনে সাহস আনো| য়ে দেশ প্রভু এদের পূর্বপুরুষদের দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তুমি তাদের সেখানে নিয়ে যাবে এবং সেই দেশ তাদের অধিকার করাবে| 8 প্রভু তোমায় পথ দেখাবেন, তিনি নিজেই তোমার সঙ্গে আছেন| তিনি তোমাকে ছাড়বেন না বা ত্যাগ করবেন না| দুশ্চিন্তা করো না, ভয় পেও না|” 9 তারপর মোশি সেই শিক্ষাগুলি লিখে যাজকদের হাতে দিলেন| যাজকরা ছিল লেবি গোষ্ঠীর লোক, যাদের কাজ ছিল প্রভুর চুক্তির সেই সিন্দুক বহন করা| মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণদের কাছেও শিক্ষাগুলি দিলেন| 10 তারপর মোশি তাদের এই আজ্ঞা দিয়ে বললেন, “প্রত্যেক সাত বছরের শেষে, মুক্তির বছরে অর্থাত্ কুটিরবাস উত্সবের সময়, 11 য়ে সময় ইস্রায়েলের সমস্ত লোক প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের মনোনীত স্থানে প্রভুর সাথে সাক্ষাত্ করতে আসবে, সেই সময় তুমি অবশ্যই এই শিক্ষাগুলি লোকদের কাছে পাঠ করবে যাতে তারা তা শুনতে পায়| 12 সকল পুরুষ, স্ত্রীলোক, শিশুদের এবং তোমাদের মধ্যে বাসকারী বিদেশীদের অবশ্যই একসাথে জড়ো করবে| তারা এই সব শিক্ষা শুনবে ও তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে সম্মান করতে শিখবে| তখন তারা ব্যবস্থার য়ে য়ে বিষয় আছে তার সবই পালন করতে পারবে| 13 উত্তরপুরুষরা যদি শিক্ষাগুলি না জেনে থাকে তবে তারাও শুনবে এবং প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, সম্মান করতে শিখবে| তারা যতদিন তোমার দেশে বাস করবে ততদিন প্রভুকে সম্মান করবে| শীঘ্রই তোমরা যর্দন নদী পার হয়ে সেই দেশ অধিকার করবে|” 14 প্রভু মোশিকে বললেন, “এখন তোমার মৃত্যুর সময় হয়ে এসেছে| যিহোশূয়কে নিয়ে সমাগম তাঁবুর কাছে এস| আমি বলব যিহোশূয়কে কি করতে হবে|” তাই মোশি ও যিহোশূয় সমাগম তাঁবুতে গেলেন| 15 প্রভু সেই তাঁবুর কাছে মেঘস্তম্ভের দর্শন দিলেন| সেই মেঘস্তম্ভ তাঁবুর দরজায দাঁড়িয়ে রইলো| 16 প্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি শীঘ্রই মারা যাবে এবং তুমি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে গেলে পর এই লোকরা আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে না| আমি তাদের সাথে য়ে চুক্তি করেছি তা তারা ভেঙ্গে ফেলবে| তারা আমায় পরিত্যাগ করে য়ে দেশে যাচ্ছে সেই দেশের মূর্ত্তিদের পূজা করবে| 17 সেই সময় আমি তাদের উপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হব এবং তাদের পরিত্যাগ করব| আমি তাদের সাহায্য করতে অস্বীকার করব আর তারা ধ্বংস হবে| তাদের প্রতি বহুবিধ ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে, তারা অনেক কষ্টেও পড়বে| তখন তারা বলবে, ‘আমাদের প্রতি এইসব অমঙ্গল ঘটছে কারণ আমাদের ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে নেই|’ 18 সেই সময় আমি তাদের সাহায্য করব না কারণ তারা মন্দ কাজ করবে এবং অন্য দেবতাদের পূজা করবে| 19 “তাই এই গানটা লিখে নাও এবং ইস্রায়েলের লোকদের তা শেখাও| তাদের এই গান গাইতে শেখাও, তাহলে এই গান ইস্রায়েলের লোকর বিরুদ্ধে আমার সাক্ষী হবে| 20 আমি তাদের পূর্বপুরুষদের য়ে দেশ দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমি তাদের সেই দেশে নিয়ে যাব| সেই দেশ উত্তম বিষয়ে পরিপূর্ণ আর তারা যা চায তাই-ই খেতে পেলে তারা হৃষ্টপুষ্ট হবে কিন্তু তখন তারা ঘুরে বসবে এবং অন্য দেবতার সেবা করবে| তারা আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাবে এবং আমার নিয়ম ভেঙ্গে ফেলবে| 21 তখন তাদের প্রতি বহু ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে| তারা অনেক কষ্টে পড়বে| সেই সময়ে তাদের লোকদের এই গান মনে পড়বে এবং তারা তাদের ভুল বুঝবে| আমি তাদের য়ে দেশ দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সেই দেশে এখনও নিয়ে যাই নি, কিন্তু আমি জানি সেখানে তারা কি করার পরিকল্পনা করছে|” 22 তাই সেই দিনেই মোশি সেই গান লিখলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের তা শেখালেন| 23 তখন প্রভু নূনের পুত্র যিহোশূয়কে বললেন, “শক্ত হও, সাহসী হও| আমি ইস্রায়েলীয়দের য়ে দেশ দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছি, সেই দেশে তুমি তাদের নিয়ে যাবে আর আমি তোমার সাথে থাকব|” 24 এই সমস্ত শিক্ষা মোশি যত্ন সহকারে একটি বইয়ে লিখলেন| 25 আর তা লেখা শেষ হলে, তিনি লেবীয়দের একটি আদেশ দিলেন| (এই লেবীয়েরা প্রভুর চুক্তির সিন্দুক বয়ে নিয়ে য়েত|) মোশি বললেন, 26 “ব্যবস্থাপুস্তক বই নিয়ে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের চুক্তির সিন্দুকের পাশে রাখ| তাহলে তা তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবে| 27 আমি জানি তোমরা খুব একগুঁযে, তোমরা তোমাদের মত করে জীবন কাটাতে চাও| দেখ আমি তোমাদের সাথে থাকাকালীনই তোমরা প্রভুর বাধ্য হতে অস্বীকার করেছিলে| তাই আমি জানি য়ে আমার মৃত্যুর পরও তোমরা তাঁর বাধ্য হতে অস্বীকার করবে| 28 তোমার পরিবারগোষ্ঠীর সমস্ত উচ্চপদস্থ কর্মচারী ও নেতাদের এক জায়গায় জড়ো করো| আমি তাদের এই সব বিষয় বলব এবং তাদের বিরুদ্ধে আকাশ ও পৃথিবীকে সাক্ষী করবো| 29 আমি জানি আমার মৃত্যুর পর তোমরা মন্দ হয়ে পড়বে| আমি য়ে ভাবে আজ্ঞা করেছি তার থেকে তোমরা দূরে সরে যাবে| ভবিষ্যতে তোমাদের অমঙ্গল হবে| কারণ প্রভু য়ে কাজ মন্দ বলেন তোমরা সেই সবই করতে চাও এবং তোমাদের মন্দ কাজের দ্বারা তাঁকে অসন্তুষ্ট কর|” 30 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এক জায়গায় জড়ো হলে মোশি তাদের জন্য এই গানের সবটাই গাইলেন:
1 “আকাশ, আমি যা বলি শোন| পৃথিবী, আমার মুখের কথা শোন| 2 আমার উপদেশ বৃষ্টির মত ঝরবে, য়েমন শিশির পড়ে মাটির উপরে, বৃষ্টির ধারা ঘাসের উপর পড়ে, য়েমন সবুজ গাছপালার উপর বৃষ্টি নামে| 3 কারণ আমি প্রভুর নাম প্রচার করব| তোমরা ঈশ্বরের প্রশংসা কর! 4 শৈল (প্রভু) এবং তাঁর কাজও ত্রুটিহীন! কারণ তাঁর পথসকল ন্যায়! ঈশ্বর সত্য এবং বিশ্বাস্য| তিনি মঙ্গলময় ও সত্| 5 সত্যি তোমরা তাঁর সন্তান নও| তোমাদের পাপসকল তাঁকে কলুষিত করে| তোমরা বিপথগামী মিথ্যেবাদী| 6 এই ভাবে কি তোমরা প্রভু তোমাদের প্রতি যা যা করেছেন তা পরিশোধ কর? তোমরা স্থূলবুদ্ধি, বোকা লোক| প্রভুই তোমাদের পিতা| তিনি তোমাকে তৈরী করলেন| তিনিই তোমার সৃষ্টিকর্তা| তিনিই তোমার ভার বহন করেন| 7 স্মরণ কর বহুপূর্বে কি ঘটেছিল| বহু বছর আগে য়ে সব ঘটনা ঘটেছিল তা মনে করে দেখ| তোমার পিতাকে জিজ্ঞাসা কর, তিনি তোমাকে বলবেন| তোমার প্রবীণদের জিজ্ঞেস কর, তাঁরাও তোমাকে বলবেন| 8 পরাত্পর পৃথিবীতে লোকদের পৃথক করেছেন| তিনি প্রত্যেক জাতিকে তাঁর নিজের দেশ দিয়েছেন| সেই সব জাতির জন্য ঈশ্বরই সীমারেখা নির্দিষ্ট করেছেন, ঈশ্বরের সন্তানদের সংখ্যা অনুসারেই রয়েছেন| 9 প্রভুর লোকরাই তাঁর অধিকার! যাকোব প্রভুরই| 10 প্রভু যাকোবকে মরুভূমিতে এক বাতাস তাড়িত দেশে পেলেন| প্রভু যাকোবের তত্ত্বাবধানের জন্য তাকে বেষ্টন করলেন| তাঁর নিজের চোখের তারার মত তাকে রক্ষা করলেন| 11 ঈগল পাখী তার শাবকদের বাসা থেকে ঠেলে দেয় য়েন তারা উড়তে শেখে| শাবকদের রক্ষা করতে সে তাদের সাথে আকাশে ওড়ে| তাদের ধরতে সে তার পাখা বিস্তার করে, তারা পড়ে গেলে সে তাদের ডানার উপর বহন করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়| প্রভু ঠিক সেই রকম হলেন| 12 প্রভু একাই যাকোবকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেলেন| কোন বিজাতীয দেবতা তাকে সাহায্য করে নি| 13 পার্বত্য দেশ অধিকার করতে তিনি যাকোবকে পরিচালনা করলেন| যাকোব ক্ষেতের শস্য সংগ্রহ করলেন| প্রভু তাকে পাথরের থেকে মধু এবং শক্ত পাথরের থেকে জলপাইযের তেল দিলেন| 14 প্রভু ইস্রায়েলকে দিলেন গো-পাল হতে উত্পন্ন মাখন এবং মেষপালের দুধ| তিনি ইস্রায়েলকে দিলেন মোটা-সোটা মেষ ও ছাগল; বাশনের সেরা মেষ এবং মিহি উত্কৃষ্ট গমের আটা| তোমরা ইস্রায়েলের লোকরা দ্রাক্ষারস, লাল রঙের দ্রাক্ষারস পান করলে| 15 কিন্তু য়িশুরূণ হৃষ্টপুষ্ট হলে ষাঁড়ের মত পদাঘাত করল| (হ্যাঁ, তোমাদের পেট ভরে খাওয়ানো হয়েছিল! তোমরা পুষ্ট ও মেদযুক্ত হলে|) তখন সে তার নির্মাতা, তার ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করল| য়ে শৈল তাকে পরিত্রাণ করেছিল তার থেকে পালাল| 16 প্রভুর লোকরাই তাঁকে ঈর্ষান্বিত করল| তারা অন্য দেবতার পূজা করল! সেই সব ভয়ঙ্কর দেবতার পূজা করে তারা ঈশ্বরকে ক্রুদ্ধ করল| 17 তারা ভূতদের উদ্দেশ্যে বলিদান উত্সর্গ করল, যারা ঈশ্বর ছিল না| ঐ দেবতারা ছিল নতুন, যাদের তারা জানত না| ঐ সব নতুন দেবতাদের তাদের পূর্বপুরুষরাও জানত না| 18 য়ে ঈশ্বর তোমার নির্মাতা তাঁকে তুমি পরিত্যাগ করলে, য়ে ঈশ্বর তোমায় জীবন দান করলেন তাঁকে ভুলে গেলে| 19 প্রভু এসব দেখলেন এবং তাদের প্রতি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন| তাঁর পুত্র কন্যারাই তাঁকে ক্রুদ্ধ করল! 20 তাই প্রভু বললেন, ‘আমি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব, তারপর দেখা যাবে কি ঘটে! তারা বিরুদ্ধাচারী| তারা বিশ্বাসঘাতক সন্তান| 21 তারা অনীশ্বর দ্বারা আমাকে ঈর্ষান্বিত করল| তারা ঐসব অর্থহীন মূর্ত্তি তৈরী করে আমাকে ক্রুদ্ধ করল| তাই আমি তাদের মধ্যে ঈর্ষা জন্মাব এমন লোকদের দ্বারা যারা প্রকৃতপক্ষে জাতি নয়| আমি তাদের একটি দুষ্ট জাতির দ্বারা ক্রুদ্ধ করব| 22 আমার ক্রোধ আগুনের মত জ্বলবে, তা কবরেরগভীরতম স্থানও বালিয়ে দেবে, তা পৃথিবী ও পৃথিবীতে উত্পন্ন সবকিছু জ্বালাবে, তা পর্বতগুলির মূলে পৌঁছে সেটাও জ্বালাবে| 23 “আমি ইস্রায়েলীয়দের উপর সঙ্কট আনব| আমার সমস্ত বাণ তাদের দিকে ছুঁড়ব| 24 তারা ক্ষুধায রোগা হয়ে যাবে| ভয়ঙ্কর সব রোগ তাদের ধ্বংস করে ফেলবে| আমি তাদের বিরুদ্ধে বন্য জন্তু পাঠাব| বিষাক্ত সাপ দ্বারা তারা দংশিত হবে| 25 পথে সৈন্যরা তাদের হত্যা করবে| বাড়ীর মধ্যেও মহাভয় বিনাশ করবে| সৈন্যরা যুবক যুবতীদের হত্যা করবে| তারা শিশু ও বৃদ্ধদেরও হত্যা করবে| 26 আমি ইস্রায়েলীয়দের ধ্বংস করার কথা ভেবেছিলাম, যাতে লোক তাদের কথা একদম ভুলে যায়! 27 কিন্তু আমি জানি তাদের শত্রুরা কি বলবে| তাদের শত্রুরা বুঝবে না| তারা বড়াই করে বলবে, “প্রভু ইস্রায়েলকে ধ্বংস করেন নি, আমরাই আমাদের শক্তিতে জয়ী হয়েছি!”‘ 28 “ইস্রায়েলের লোকরা বোকা, তারা বোঝে না| 29 যদি শুধু তারা জ্ঞানবান হত তবে বুঝত| তারা বুঝত তাদের প্রতি কি ঘটতে পারে! 30 একজন লোক কি কখনও 1,000 লোককে তাড়িয়ে দিতে পারে? দুজন কি কখনও 10,000 লোককে পালাতে বাধ্য করতে পারে? এই সব তখনই ঘটে যখন প্রভু তাদের শত্রুর হাতে সমর্পণ করেন! এই সব তখনই ঘটে যদি শৈলতাদের দাসের মত বিক্রয় করে দেন! 31 আমাদের শত্রুদের য়ে ‘শৈল’ তা আমাদের শৈলের মত বলবান নয়! এমন কি আমাদের শত্রুরাও সেটা জানে! 32 তাদের দ্রাক্ষালতা সদোমের দ্রাক্ষালতা হতে এবং ঘমোরার ক্ষেত হতে উত্পন্ন| তাদের দ্রাক্ষা ফল প্রাণনাশক বিষের মত| 33 তাদের দ্রাক্ষারস সাপের বিষের মত| 34 “প্রভু বলেন, ‘আমি সেই শাস্তি সঞ্চয় করে রাখছি| আমি তা আমার ভাণ্ডারে বন্ধ করে রেখেছি! 35 তারা য়ে সব মন্দ কাজ করেছে তার জন্য আমি তাদের শাস্তি দেব| কিন্তু আমি সেই দিনের জন্য শাস্তি সঞ্চয় করে রেখেছি যখন তাদের পা পিছলে যাবে| তাদের কষ্টের সময় সন্নিকট| শীঘ্রই তাদের শাস্তি নেমে আসবে|’ 36 “প্রভু তাঁর লোকদের বিচার করবেন| তারা তাঁর দাস এবং প্রভু যখন দেখবেন য়ে ক্রীতদাস এবং স্বাধীন লোকরা শক্তিহীন এবং সহায়হীন হয়েছে তখন তিনি তাদের উপর করুণা প্রদর্শন করবেন| 37 তখন প্রভু বলবেন, ‘তাদের সেই দেবতারা কোথায়? কোথায় সেই ‘শৈল’ যার কাছে আশ্রয়ের জন্য তারা ছুটে গিয়েছিল? 38 সেই দেবতারা তোমাদের বলির চর্বি ভোজন করত এবং পেয নৈবেদ্যর দ্রাক্ষারস পান করত| ঐ সব দেবতারাই উঠে এসে তোমাদের সাহায্য করুক! তারাই তোমাদের রক্ষা করুক! 39 “‘এখন দেখ আমি, কেবল আমিই ঈশ্বর! আর কোন ঈশ্বর নেই! আমিই বধ করি, আমিই জীবন দান করি, আমি আঘাত করি, আমিই সুস্থ করি| আমার হাত থেকে কেউ কাউকে উদ্ধার করতে পারে না! 40 আমি আকাশের দিকে আমার হাত তুলে এই প্রতিজ্ঞা করি, আমার অনন্তজীবন য়েমন নিশ্চিত সেই নিশ্চিতভাবেই এগুলি ঘটবে! 41 আমি প্রতিজ্ঞা করছি, আমি আমার প্রদীপ্ত তরবারি ধারালো করব| তাদের উচিত্ শাস্তি দেব| আমি তা দিয়ে শত্রুদের শাস্তি দেব এবং যারা আমায় ঘৃণা করে তাদের প্রতিফল দেব| 42 আমার শত্রুরা হত হবে এবং তাদের বন্দী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হবে| আমার তীর তাদের রক্তে রাঙাব| আমার তরবারি তাদের সেনাদের মাথাগুলি কেটে নেবে|’ 43 “জাতিগণ, তোমরা ঈশ্বরের লোকদের জন্য আনন্দ কর! কারণ তিনি তাদের সাহায্য করেন| তাঁর দাসদের হত্যাকারীকে তিনি শাস্তি দেন| তিনি তাঁর শত্রুদের উচিত্ শাস্তি দেন| আর এই ভাবে তিনি তাঁর দেশ ও প্রজাদের পবিত্র করেন|” 44 তারপর মোশি একে ইস্রায়েলের লোকদের শুনিয়ে শুনিয়ে এই গানের সমস্ত কথাগুলি বললেন| নূনের পুত্র যিহোশূয় মোশির সাথে ছিলেন| 45 মোশি লোকদের এই বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া শেষ করে বললেন, 46 “আমি আজ য়ে সব আদেশ দিলাম তার প্রতি তোমরা অবশ্যই মনোযোগ দেবে এবং সন্তানদেরও শিক্ষা দিও য়েন তারা ব্যবস্থার সমস্ত আজ্ঞা পালন করে| 47 ভেবো না এই সব শিক্ষা গুরুত্বহীন| তারা তোমার জীবন! এইসব শিক্ষা অনুসরণ করলে তোমরা যর্দন নদীর ওপারের দেশে দীর্ঘজীবি হবে - য়ে দেশ তোমরা অধিকার করবে|” 48 সেই একই দিনে প্রভু মোশির সঙ্গে কথা বললেন| তিনি বললেন, 49 “তুমি অবারীম পর্বতে যাও| য়িরীহোর সামনে অবস্থিত মোয়াব দেশের নবো পর্বতে ওঠো| তাহলে ইস্রায়েলের লোকদের বসবাসের জন্য য়ে কনান দেশ আমি তাদের দিচ্ছি, তা তুমি দেখতে পাবে| 50 তুমি সেই পর্বতে মারা যাবে| তোমার ভাই হারোণ, য়ে হোর পর্বতে মারা গিয়েছিল এবং তারপর তার নিজের লোকদের সঙ্গে মিলিত হবার জন্য চলে গিয়েছিল| তুমিও সেইভাবেই পূর্বপুরুষদের সাথে সংগৃহীত হবে| 51 কারণ তোমরা দুজনেই আমার বিরুদ্ধে পাপ করেছিলে| তোমরা কাদেশের কাছে মরীবার জলের ধারে ছিলে, য়েটা সিন মরুভূমিতে রয়েছে, সেখানে ইস্রায়েলের লোকদের সামনে তোমরা আমাকে সম্মান কর নি এবং আমাকে পবিত্র বলে মান্য কর নি| 52 তাই এখন তোমরা সেই দেশ দেখতে পার, যা আমি ইস্রায়েলের লোকদের দিচ্ছি, কিন্তু তোমরা সেই দেশে প্রবেশ করতে পারবে না|”
1 মৃত্যুর পূর্বে ঈশ্বরের লোক মোশি, ইস্রায়েলের লোকদের এই সব বলে আশীর্বাদ করলেন| 2 “প্রভু সীনয় পর্বত হতে এলেন, সেযীরের গোধুলি বেলায় য়েন আলো উদিত হল| পারণ পর্বত হতে য়েন আলো জ্বলে উঠলো| প্রভু তাঁর 10,000 পবিত্র জনকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে এলেন| ঈশ্বরের পরাক্রমী সৈন্যরা তাঁর পাশে ছিল| 3 হ্যাঁ, প্রভু তাঁর লোকদের ভালবাসেন| সমস্ত পবিত্র লোকরা তাঁর হাতে রয়েছে| তারা তাঁর চরণতলে বসে তাঁর শিক্ষাসকল শেখে! 4 মোশি আমাদের বিধি দিলেন| সেই সব শিক্ষা যাকোবের লোকদের জন্য| 5 সেই সময় ইস্রায়েলের লোকরা ও তাদের নেতারা এক সাথে জড়ো হল, আর প্রভু য়িশুরূণের (ইস্রায়েলের) রাজা হলেন! 6 “রূবেণ বেঁচে থাকুক, মারা না যাক| কিন্তু তার পরিবারগোষ্ঠীর লোকসংখ্যা অল্প হোক!”যিহূদার আশীর্বাদ 7 “যিহূদার বিষয়ে মোশি এই কথা বললেন: “যিহূদার নেতা সাহায্যের জন্য প্রার্থনা জানালে প্রভু তার প্রার্থনা শুনুন| তাঁর লোকদের কাছে তাকে নিয়ে আসুন| তাকে শক্তিশালী করে তার শত্রুদের হারাতে সাহায্য করুন|” 8 লেবীর সম্বন্ধে মোশি এই কথাগুলি বললেন:“লেবি তোমার প্রকৃত অনুসরণকারী, উরীম ও তূম্মীম তার সাথে রয়েছে| মঃসাতে তুমি লেবীর পরীক্ষা করেছিলে| মরীবার জলের ধারে তুমি তাদের পরীক্ষা করে প্রমাণ করেছিলে য়ে তারা তোমার| 9 তারা তোমার বিষয়েই বেশী যত্নশীল হে প্রভু, এমনকি নিজেদের পরিবারের থেকেও| তারা তাদের মাতাপিতাকে উপেক্ষা করেছে, নিজের ভাইদেরও স্বীকার করেনি| এমন কি তারা তাদের শিশুদের বিষয়েও মনোযোগ করে নি| কিন্তু তারা তোমার আদেশসকল পালন করেছে| তারা তোমার বন্দোবস্ত অনুসরণ করেছে| 10 তারা যাকোবকে তোমার শাসন শিক্ষা দেবে| তোমার ব্যবস্থা ও আজ্ঞা ইস্রায়েলকে বিধি দেবে| তারা তোমার সামনে ধূপ জ্বালাবে| তোমার বেদীতে তারা হোমবলি উত্সর্গ করবে| 11 প্রভু, লেবীর শক্তিকে আশীর্বাদ কর| তার হাতের কাজ গ্রহণ কর| যারা তাদের আক্রমণ করে তাদের ধ্বংস কর| তার শত্রুদের পরাজিত কর, য়েন শত্রুরা আর কখনও ফিরে আক্রমণ করতে না পারে|” 12 বিন্যামীনের সম্বন্ধে মোশি বললেন: “প্রভু বিন্যামীনকে ভালবাসেন| বিন্যামীন নিরাপদেই তাঁর কাছে থাকবে| প্রভু সবসময় তাকে রক্ষা করেন এবং প্রভু তার দেশে বাস করবেন| 13 য়োষেফের সম্বন্ধে মোশি বললেন: “প্রভু য়োষেফের দেশকে আশীর্বাদ করুন| প্রভু তাদের মাথার উপরের আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষান আর পাযের তলার মাটি থেকে জল দিন| 14 সূর্য় তাদের য়েন ভাল ফল দেয়| প্রত্যেক মাসেই য়েন উত্তম ফল হয়| 15 পুরাতন পর্বত সকল ও গিরিমালাগুলি য়েন উত্তম উত্তম ফল দেয়| 16 পৃথিবী য়েন তার উত্কৃষ্ট বিষয়গুলি য়োষেফকে দেয়| য়োষেফকে তার ভাইদের থেকে আলাদা করা হয়েছিল| তাই জ্বলন্ত ঝোপের প্রভু তাঁর উত্কৃষ্ট বিষয় সকল য়োষেফকে দিন| 17 য়োষেফ শক্তিশালী ষাঁড়ের মত| তার দুই পুত্র ষাঁড়ের দুই শিঙের মত| তারা অন্য জাতির লোকদের তাই দিয়ে আক্রমণ করবে এবং তাদের পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্য়ন্ত ঠেলে নিয়ে যাবে| হ্যাঁ, সেই শিং দুইটি ইফ্রয়িমের দশ হাজার লোক এবং মনঃশির হাজার লোক|” 18 সবূলূন সম্বন্ধে মোশি বললেন: “সবূলূন, আনন্দিত হও, যখন তুমি বাইরে যাও| ইষাখর, আনন্দিত হও, তোমার বাসের তাঁবুতে| 19 তারা লোকদের পর্বতে ডেকে নিয়ে যাবে| সেখানে তারা যথাযথ বলি উত্সর্গ করবে| তারা সমুদ্র থেকে সম্পদ এবং সমুদ্রতট থেকে গুপ্তধন আহরণ করবে|” 20 গাদ সম্বন্ধে মোশি বললেন: “ঈশ্বরের প্রশংসা হোক যিনি গাদকে এক বিশাল ভুখণ্ড দিলেন! গাদ সিংহের মত, সে শুয়ে পড়ে অপেক্ষা করে| তারপর আক্রমণ করে পশুদের ছিন্ন ভিন্ন করে| 21 সে নিজের জন্য উত্তম অংশ মনোনীত করে রাজার মত নিজের অংশ নেয়| লোকদের নেতারা তার কাছে আসে| প্রভু যা ভাল বলেন সে তাই করে| সে ইস্রায়েলের লোকদের জন্য ন্যায় তাই করে|” 22 দান সম্বন্ধে মোশি বললেন: “দান সিংহ শাবক, সে বাশন থেকে লাফ দেয়|” 23 নপ্তালি সম্বন্ধে মোশি বললেন: “নপ্তালি তুমি অনেক উত্তম বিষয় পাবে| প্রভু সত্য সত্যই তোমায় আশীর্বাদ করবেন| গালীল হ্রদের দেশ তুমিই পাবে|” 24 আশের সম্বন্ধে মোশি বললেন: “পুত্রদের মধ্যে আশেরই সবচেয়ে আশীর্বাদপ্রাপ্ত| সে তার ভাইদের মধ্যে প্রিয হোক, সে তার পা তেলে ধুয়ে নিক| 25 তোমার দরজায লোহার ও তামার তৈরী তালা ঝুলবে| তোমার সমস্ত জীবনে তুমি হবে শক্তিমান|” 26 “হে য়িশুরূণ, ঈশ্বরের মত আর কেউ নেই! ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করতে তাঁর গৌরবে মেঘে আরোহণ করে আকাশের মধ্য দিয়ে আসেন! 27 ঈশ্বর চিরজীবি| তিনিই তোমার নিরাপদ স্থান| ঈশ্বরের পরাক্রম চিরকাল স্থায়ী! তিনিই তোমাকে রক্ষা করেন| ঈশ্বর তোমার শত্রুকে তোমার দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করবেন| তিনি বললেন, ‘শত্রুকে ধ্বংস করো!’ 28 সুতরাং ইস্রায়েল নিরাপদে বাস করবে, যাকোবের কূপ তাদেরই অধিকারে| তারা শস্যের ও দ্রাক্ষারসের দেশ পাবে| আর সেই দেশ পাবে প্রচুর বৃষ্টি| 29 ইস্রায়েল, তুমি আশীর্বাদপ্রাপ্ত, আর কোন জাতি তোমার মত নয়| প্রভু তোমার পরিত্রাণ সাধন করলেন| প্রভু ঢালের মত তোমাকে রক্ষা করেন| প্রভু শক্তিশালী তরবারির মত| তোমার শত্রুরা তোমায ভয় পাবে এবং তুমি তাদের পবিত্র স্থানগুলি দখল করবে!”
1 মোশি নবো পর্বতে উঠলেন| তিনি মোয়াবের যর্দন উপত্যকা থেকে পিস্গার চূড়ায় উঠলেন| এটা ছিল য়র্দ্দনের ধারে য়িরীহোর অপর পারে| প্রভু মোশিকে গিলিয়দ থেকে দান পর্য়ন্ত সমস্ত দেশ দেখালেন| 2 প্রভু তাকে নপ্তালি, ইফ্রয়িম ও মনঃশির সমস্ত দেশ দেখালেন| তিনি ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত যিহূদার সমস্ত দেশ দেখালেন| 3 প্রভু মোশিকে নেগেভ স্থানটি এবং সোর থেকে য়ে উপত্যকা খেজুর গাছের শহর য়িরীহো চলে গেছে তাও দেখালেন| 4 প্রভু মোশিকে বললেন, “এই সেই দেশ, যার বিষয়ে আমি অব্রাহাম, ইসহাক ও যাকোবের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম| আমি বলেছিলাম, ‘এই দেশ আমি তোমার উত্তরপুরুষদের দেব| আমি তোমায় সেই দেশ দেখতে দিয়েছি, কিন্তু তুমি সেখানে য়েতে পারবে না|” 5 তারপর প্রভুর দাস মোশি মোয়াব দেশে মারা গেলেন| এই রকমই য়ে ঘটবে তা প্রভু মোশিকে জানিয়েছিলেন| 6 প্রভু মোশিকে মোয়াব দেশে কবর দিলেন| এটি ছিল বৈত্পিযোরের সামনের উপত্যকা| কিন্তু আজও লোক জানে না মোশির কবরটা ঠিক কোথায় রয়েছে| 7 মারা যাবার সময় মোশির বযস হয়েছিল 120 বছর| তিনি আগেকার মতই শক্ত সমর্থ ছিলেন এবং তার চোখও ক্ষীণ হয়ে যায় নি| 8 ইস্রায়েলের লোকরা 30 দিন ধরে মোশির জন্য শোক করেছিলেন| সেই শোকের সময় কেটে না যাওয়া পর্য়ন্ত তারা মোয়াব দেশের যর্দন উপত্যকায কাটালেন| 9 মোশি যিহোশূয়োর উপরে তাঁর হাত রেখে তাকে নতুন নেতা হিসাবে মনোনীত করেছিলেন| আর তখন নূনের পুত্র যিহোশূয় প্রজ্ঞার আত্মায পূর্ণ হয়েছিলেন| তাই ইস্রায়েলের লোকরা যিহোশূয়োর কথার বাধ্য হতে লাগল| প্রভু মোশিকে যা আজ্ঞা করেছিলেন তারা সেই মত কাজ করতে থাকল| 10 মোশির মত ইস্রায়েলে আর কোন ভাববাদী ছিল না| প্রভু মোশির সামনাসামনি আলাপ করতেন| 11 প্রভু মোশিকে মিশর দেশে মহা পরাক্রমের অলৌকিক কাজ করতে পাঠিয়েছিলেন| ফরৌণ, তার উচ্চপদস্থ কর্মচারী ও মিশরের সমস্ত লোক সেই সব অলৌকিক কাজ দেখেছিল| 12 আর কোন ভাববাদী মোশির মত এত পরাক্রমের ও আশ্চর্য় কাজ করেন নি| ইস্রায়েলের সমস্ত লোক তার মহান কাজগুলি দেখেছিল|
1 মোশি ছিলেন প্রভুর দাস| তাঁর সহকারী ছিলেন নূনের পুত্র যিহোশূয়| মোশির মৃত্যুর পর প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, 2 “আমার দাস মোশি মারা গেছে| এখন তুমি এই সব লোকদের নিয়ে যর্দন নদী পেরিয়ে যাও| তোমাদের সেই দেশে য়েতে হবে য়েটা আমি তোমাদের ইস্রায়েলবাসীদের দিচ্ছি| 3 আমি মোশিকে য়েমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সেই রকম ভাবেম্প সেখানে তোমরা পদার্পণ করবে| সেই সব জায়গা আমি তোমাদের দেব| 4 হিত্তীয়দের সমস্ত জমি, মরুভূমি এবং লিবানোন থেকে শুরু করে মহানদী (ফরাত্ নদী) পর্য়ন্ত তোমাদের হবে| এখানে থেকে পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর, (যেখানে সূর্য় অস্তাচলে নামে) সমস্ত ভূখণ্ডই জেনো তোমার হবে| 5 মোশির সঙ্গে আমি য়েমন ছিলাম তোমার সঙ্গেও আমি ঠিক তেমনি থাকব| কেউ তোমাকে কোন দিন রুখতে পারবে না| আমি তোমাকে ছেড়ে কখনই যাব না| আমি তোমাকে কখনই ত্যাগ করব না| 6 “যিহোশূয়, শক্তিমান হও, সাহসী হও| তুমি এই লোকদের এমন ভাবে নেতৃত্ব দেবে, যাতে তারা নিজেদের দেশ অধিকার করতে পারে| আমি য়ে তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম য়ে এদেশ তাদের হাতে তুলে দিয়ে যাব! 7 কিন্তু আর একটি বিষয়েও তোমাকে শক্ত ও সাহসী হতে হবে| আমার দাশ মোশি য়ে নির্দেশগুলি দিয়ে গেছে, সেগুলি অবশ্যই তোমাকে মেনে চলতে হবে| তুমি যদি তার নীতি হুবহু মেনে চলো, তবে সব কাজেই তোমার সাফল্য় নিশ্চিত| 8 বিধি পুস্তকে যা-যা লেখা আছে সর্বদাই সে সব মনে রেখো| ঐ পুস্তক দিন রাত পাঠ করো| তাহলে লিখিত নির্দেশগুলি তুমি নিশ্চয়ই পালন করতে পারবে| যদি এই কাজ সম্পূর্ণভাবে করতে পার তাহলে তুমি বুদ্ধিপূর্বক চলবে ও তুমি যা কিছু করবে তাতেই কৃতকার্য় হবে| 9 মনে রেখো, আমি তোমাকে শক্তিমান ও সাহসী হতে বলেছি| তাই বলছি ভয় পেও না| তুমি যেখানেই যাও, প্রভু, তোমার ঈশ্বর, তোমার সঙ্গে রয়েছেন|” 10 তখন যিহোশূয় দলপতিদের আদেশ দিলেন| তিনি তাদের বললেন, 11 “পুরো শিবিরটা ঘুরে এসো এবং লোকদের প্রস্তুত হতে বলো| তাদের বলো, ‘খাদ্য য়েন মজুত থাকে| বলো আর তিনদিন পর আমরা যর্দন নদী অতিক্রম করব| নদী পেরিয়ে আমরা সে দেশেই যাব য়ে দেশ বয়ং প্রভু, তোমার ঈশ্বর, তোমাদের দান করেছেন|”‘ 12 তারপর যিহোশূয় রূবেণ ও গাদ পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গে এবং মনঃশিদের অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বললেন| তিনি বললেন, 13 “মনে রেখো প্রভুর দাস মোশি তোমাদের কি বলেছেন| তিনি বলেছিলেন, প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের থাকার জন্য জায়গা দেবেন| প্রভুই তোমাদের সেই দেশ দান করবেন|” 14 বস্তুত, যর্দন নদীর পূর্ব তীরের দেশটি ইতিমধ্যেই মোশি তোমাদের সম্প্রদান করেছেন| তোমাদের স্ত্রী-পুত্ররা, তোমাদের পশুরা সেখানে থাকবে| কিন্তু তোমাদের সৈন্যরা য়েন অবশ্যই তোমাদের ভাম্পদের নিয়ে যর্দন নদী পেরিয়ে যায়| যুদ্ধের জন্য সকলেই তৈরী থেকো| সে দেশের দখল নিতে তাদের সর্বপ্রকার সাহায্য কোরো| 15 প্রভু তোমাদের বিশ্রামের জন্য স্থান করে দিয়েছেন| তিনি তোমাদের ভাইদের জন্যও সেই একই ব্যবস্থা করবেন| যতদিন না তারা তাদের ঈশ্বর প্রদত্ত সেই দেশ পাচ্ছে তোমরা তাদের সাহায্য কোরো| তারপর তোমরা নিজেদের বাসভূমিতে অর্থাত্ যর্দন নদীর পূর্ব তীরের সেই দেশে ফিরে এসো| প্রভুর দাস মোশি তোমাদের এই দেশ দিয়েছিলেন|” 16 যিহোশূয়র কথার উত্তরে লোকরা বলল, “আপনি যা আদেশ করবেন, আমরা সবই পালন করব| যেখানে য়েতে বলবেন যাব! 17 যা বলবেন মেনে চলব, য়েমন ভাবে মোশির আদেশ আমরা মেনে চলতাম| আমরা শুধু প্রভুর কাছে একটা জিনিসই চাইব| আমরা চাই প্রভু আপনার ঈশ্বর য়েন আপনার সঙ্গে সর্বদাই বিরাজ করেন, য়েমন মোশির সঙ্গে তিনি সর্বদাম্প থাকতেন| 18 যদি কেউ আপনার আদেশ অমান্য করে কিংবা আপনার বিরুদ্ধাচারণ করে তাকে আমরা হত্যা করবই| আপনি কেবল বলবান ও সাহসী হোন|”
1 নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং অন্য সকলে শিটীম শহরে শিবির স্থাপন করলেন| তারপর যিহোশূয় সকলের অজ্ঞাতে দুজন গুপ্তচরকে পাঠালেন| তিনি তাদের বললেন, “দেশটা ভাল করে ঘুরে দেখে এসো, বিশেষ করে য়িরীহো শহরটার দিকে নজর রেখো|”তারা য়িরীহোর দিকে রওনা দিল| সেখানে তারা এক গণিকাগৃহে উঠল| তার নাম রাহব| 2 কোন একজন গিয়ে য়িরীহোর রাজার কাছে বলল, “কাল রাত্রে ইস্রায়েল থেকে কিছু লোক আমাদের দেশের কোথায় কি দুর্বলতা আছে দেখবার জন্যই এসেছে|” 3 তখন য়িরীহোর রাজা রাহবের কাছে বার্তা পাঠালেন, “যারা তোমার বাড়ীতে রয়েছে তাদের লুকিয়ে রেখো না| তাদের বের করে দাও| তারা তোমাদের দেশে গুপ্তচর বৃত্তি করতে এসেছে|” 4 রাহব দুজনকে লুকিয়েই রেখেছিল| সে বলল, “এরা এসেছিল ঠিকই, কিন্তু কোথা থেকে এসেছিল তা জানি না| 5 সন্ধ্যাবেলা নগরের ফটক বন্ধ হবার সময় তারা দুজন চলে গেল| কোথায় গেল তাও জানি না| তাড়াতাড়ি তাদের পেছনে পেছনে যাও, হয়তো তুমি তাদের ধরে ফেলতেও পারো|” 6 (আসলে রাহব ওদের কাছে যাই বলুক, ঐ দুজনকে সে ছাদের উপরে মসিনার ডাঁটার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল|) 7 রাজার লোকরা নগরের বাইরে বেরিয়ে গেল| নগরের সমস্ত ফটক বন্ধ করে দেওয়া হল| তারা ইস্রায়েল থেকে আসা ঐ দুজনের খোঁজে বেরিয়ে যর্দন নদীর ধারে এসে পৌঁছাল আর নদীর যেখানে যেখানে লোক পারাপার করে সেসব জায়গায় খোঁজ করতে লাগল| 8 এদিকে ওরা দুজন যখন শুয়ে পড়ার আযোজন করছে রাহব ছাদে উঠে এলো| 9 সে তাদের বলল, “আমি জানি প্রভু তোমাদের লোকদের এই দেশ দিয়েছেন| তোমরা আমাদের ভয় পাইযে দিয়েছ| 10 আমরা ভয় পেয়েছি কারণ আমরা শুনেছি য়ে কি ভাবে প্রভু তোমাদের সহায় হয়েছিলেন| আমরা শুনেছি মিশর থেকে আসার সময় তিনি লোহিত সাগরের জল শুকিয়ে দিয়েছিলেন| আমরা এও শুনেছি সীহোন আর ওগ নামের দুজন ইমোরীয় রাজাকে তোমরা কি করেছিলে| আমরা জানি য়র্দ্দনের পূর্বতীরে ঐ রাজাদের তোমরা কি ভাবে ধ্বংস করেছিলে| 11 এই সব বৃত্তান্ত শুনে আমরা আতঙ্কিত হয়ে আছি| আমাদের মধ্যে এমন বীর কেউ নেই য়ে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে| এর কারণ তোমাদের প্রভু ঈশ্বর ওপরে স্বর্গ আর নীচে এই বিশ্বলোকের শাসনকর্তা| 12 আমি তো তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সাহায্য করেছি, তাই তোমাদের কাছে আমি একটা কথা দিতে অনুরোধ করছি| প্রভুর সামনে শপথ করে বলো তোমরা আমার পরিবারের প্রতি দযা করবে| বলো করবে তো? 13 কথা দাও আমার পরিবারের সকলকে বাঁচিয়ে রাখবে| আমার মাতা, পিতা, ভাই-বোন আর তাদের সংসারের সকলকে বাঁচিয়ে রেখো| প্রতিশ্রুতি দাও মৃত্যুর হাত থেকে তোমরা আমাদের রক্ষা করবে|” 14 ওরা দুজন সম্মত হল| তারা বলল, “জীবন দিয়ে আমরা তোমাদের রক্ষা করব| কিন্তু কাউকে বলবে না আমরা কি করছি| প্রভু যখন আমাদের নিজস্ব দেশ আমাদের দেবেন তখন তোমাদের তো কৃপা করবই| তোমরা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারো|” 15 স্ত্রীলোকটির বাড়ী নগর প্রাচীরের গায়ে তৈরী করা হয়েছিল| এটা প্রাচীরেরই এক অংশ ছিল| সে জানালা দিয়ে একটা মোটা দড়ি ঝুলিয়ে দিল যাতে সেটা বেযে বেযে ওরা বেরিয়ে য়েতে পারে| 16 স্ত্রীলোকটি বলল, “পশ্চিমে পাহাড়ের দিকে তোমরা চলে যাও| তাহলে হঠাত্ করে রাজার সৈন্যরা তোমাদের খুঁজে পাবে না| ওখানে তিনদিন তোমরা আত্মগোপন করে থাকো| সৈন্যরা ফিরে এলে তোমরা তোমাদের পথে ফিরে য়েও|” 17 তারা বলল, “আমরা তোমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি কিন্তু তোমাকে য়ে একটা কাজ করতে হবে, নইলে কথা রাখতে না পারলে আমরা দাযী হব না| 18 আমাদের পালানোর জন্য তুমি এই লাল দড়িটা কাজে লাগিয়েছ| আমরা তো অবশ্যই এখানে ফিরে আসছি| তখন কিন্তু এই দড়িটা আবার জানালায ঝুলিয়ে রাখবে| তুমি অবশ্যই তোমার বাড়ীতে মাতা, পিতা, ভাই-বোনদের এবং তোমার সমস্ত পরিবারবর্গকে নিয়ে আসবে| 19 এই বাড়ীতে যারাই থাকবে তাদের প্রত্যেককে আমরা রক্ষা করব| কেউ যদি আহত হয় তার জন্য আমরা দাযী থাকব| কিন্তু কেউ যদি বাড়ীর বাইরে থাকে তাহলে সে হত হতে পারে, সে ক্ষেত্রে আমরা দাযী হব না| সে ক্ষেত্রে দোষ তার নিজের| 20 তোমার সঙ্গে এই আমাদের চুক্তি হয়ে রইল| কিন্তু তুমি যদি কাউকে এসব ফাঁস করে দাও তাহলে এই চুক্তি আর চুক্তি থাকবে না|” 21 স্ত্রীলোকটি বলল, “তোমরা যা যা বলেছ সব আমি করব|” সে তাদের বিদায জানাল| তারা তার বাড়ী থেকে বেরিয়ে গেল| লাল দড়িটা সে জানালায বেঁধে দিল| 22 তারা বাড়ী থেকে বেরিয়ে পাহাড়ের দিকে যাত্রা করল| তারা সেখানে তিনদিন রইল| রাজপ্রহরীরা সমস্ত রাস্তায় নজরদারি করতে লাগল| তিনদিন এভাবে কেটে যাবার পর তারা আশা ছেড়ে দিয়ে নগরে ফিরে এলো| 23 তারপর লোক দুটি পাহাড় পেরিয়ে, নদী পেরিয়ে নূনের পুত্র যিহোশূয়র কাছে ফিরে এলো| তারা যা যা দেখেছে সব তাকে জানাল| 24 যিহোশূয়কে তারা বলল, “প্রভু যথার্থই সমস্ত দেশটা আমাদের দিয়ে গেছেন| ওদেশের সমস্ত লোক আমাদের ভয়ে ভীত হয়ে আছে|”
1 পরদিন খুব সকালে যিহোশূয় আর ইস্রায়েলের সমস্ত লোক উঠে শিটীম ছেড়ে চলে গেল| তারা য়র্দ্দনের পারে গিয়ে পৌঁছল| নদী পেরোবার আগে সেখানেই তাঁবু খাটাল| 2 তিন দিন পর, দলপতিরা শিবিরের সর্বত্র ঘুরে দেখলেন| 3 তারপর তাঁরা সকলকে বললেন, “তোমরা যখন যাজকদের এবং লেবীয়দের প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করতে দেখবে তখন তোমরা অবশ্যই তাদের অনুসরণ করবে| 4 কিন্তু দেখো য়েন খুব কাছে থেকে অনুসরণ কোরো না| প্রায 1,000 গজ তফাতে থাকবে| তোমরা এখানে আগে আসোনি, তাই যদি তাদের অনুসরণ করো, জানতে পারবে কোথায় তোমাদের গন্তব্য|” 5 তারপর যিহোশূয় তাদের বললেন, “নিজেদের পবিত্র করো| আগামীকাল প্রভু তোমাদের উপস্থিতিতে কিছু আশ্চর্য়্য় কাজ করবেন|” 6 যিহোশূয় যাজকদের বললেন, “সাক্ষ্যসিন্দুক নিয়ে সকলের সামনে দিয়েই নদী পেরিয়ে যাও|” তারা তাই করল| 7 প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “আজ আমি তোমাকে মহাপুরুষ করে গড়ে তোলবার কাজে প্রবৃত্ত হব| ইস্রায়েলের সমস্ত লোক তোমার দিকে তাকিযে থাকবে| তারা জানবে য়ে আমি তোমার সঙ্গে আছি, য়েমন মোশির সঙ্গে ছিলাম| 8 যাজকরা সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করবে| একথা তাদের বোলো, ‘আপনারা যর্দন নদীর তীর পর্য়ন্ত হেঁটে যাবেন এবং নদীতে পা রাখার ঠিক আগেই থেমে যাবেন|”‘ 9 তারপর ইস্রায়েলের লোকদের উদ্দেশ্যে যিহোশূয় বললেন, “তোমরা সকলে এখানে এসো এবং তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের বার্তা শ্রবণ করো| 10 প্রমাণ আছে জীবন্ত ঈশ্বর যথার্থই তোমাদের সঙ্গে আছেন| প্রমাণ আছে, তিনি সত্যই তোমাদের শত্রুকে পরাজিত করবেন| তিনি কনানীয়, হিত্তীয়, হিব্বীয়, পরিষীয়, গির্গাশীয, ইমোরীয় এবং য়িবুষীযদের পরাজিত করবেন| ঐ ভুখণ্ড থেকে তিনি তাদের চলে য়েতে বাধ্য করবেন| 11 এই হল প্রমাণ| তোমরা যখন যর্দন নদী পেরোবে, তখন প্রভু, যিনি সমস্ত ভূমণ্ডলের অধিকারী, তাঁর সাক্ষ্যসিন্দুক তোমাদের আগে আগে যাবে| 12 এখন তোমাদের মধ্যে থেকে বারোজনকে তোমরা বেছে নাও| 13 যাজকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করবেন| প্রভুই সমস্ত ভূমণ্ডলের রাজাধিরাজ| যাজকেরা তোমাদের সামনে দিয়ে সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করে যর্দন নদীতে নামবেন| তারা নদীতে পদার্পণ করা মাত্রই নদীর জলস্রোত স্তব্ধ হয়ে যাবে| সেই স্তব্ধীভূত জল নদীর পিছনে পূর্ণ হয়ে বাঁধের আকারে পড়ে থাকবে|” 14 যাজকরা সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করলেন| লোকরা যেখানে তাঁবু গেড়েছিল সেখান থেকে বেরিয়ে যর্দন নদী পেরোনোর জন্যে রওনা হল| 15 (ফসল তোলার সময় য়র্দ্দনের দুই কুলই প্লাবিত হয়ে যায়| তাই নদী তখন কানায়-কানায় পূর্ণ ছিল|) যাজকরা সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করে নদীর ধারে এসে পৌঁছলেন এবং নদীতে পা রাখলেন| 16 সঙ্গে সঙ্গে জলস্রোত থেমে গেল| সব জল নদীর পেছনে বাঁধের মতো জমা হয়ে রইল| সেম্প জলরাশি নদীর ধার দিয়ে সোজা আদম পর্য়ন্ত (সর্ত্তনের নিকবর্তী এক শহরে) জমে রম্পল| য়িরীহোর কাছাকাছি গিয়ে লোকেরা নদী পেরোল| 17 সে জায়গার মাটি শুকিয়ে গিয়েছিল| যাজকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক মাঝ নদী পর্য়ন্ত বহন করার পর থামলেন| তাঁরা অপেক্ষা করলেন| য়র্দ্দনের শুষ্ক ভূমির ওপর দিয়ে ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষ হাঁটতে লাগল|
1 সকলে যর্দন নদী পেরিয়ে এলে প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, 2 “বারো জনকে এবার বেছে নাও| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী থেকে এক জন করে নেবে| 3 নদীর যেখানে যাজকরা দাঁড়িয়ে আছেন সেদিকে তাদের তাকাতে বলো| সেখানে বারোটি শিলা তাদের খুঁজে নিতে নির্দেশ দাও| ঐ বারোটি শিলা বহন করো| আজ রাত্রে যেখানে থাকবে সেখানে ঐগুলো রেখে দেবে|” 4 সেই মত যিহোশূয় প্রতি পরিবারগোষ্ঠী থেকে এক জন করে লোক বেছে নিলেন| তিনি সেই বারো জনকে এক সঙ্গে ডাকলেন| 5 যিহোশূয় তাদের বললেন, “নদীর যেখানে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক রয়েছে সেখানে যাও| তোমরা প্রত্যেকে একটি করে পাথর খুঁজে নেবে| ইস্রায়েলের বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক জনের জন্য একটি করে পাথর| ঐ পাথর কাঁধে তুলে নাও| 6 এই সব পাথর তোমাদের কাছে এক একটা প্রতীকের মতো| ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তানসন্ততিরা জিজ্ঞাসা করবে, ‘এই সব পাথরের অর্থ কি?’ 7 তোমরা তাদের বলবে প্রভু যর্দন নদীর স্রোত বন্ধ করে দিয়েছিলেন| যখন সাক্ষ্যসিন্দুকটিকে যর্দন নদী পার করানো হচ্ছিল তখন জল তার প্রবাহ বন্ধ রেখেছিল| পাথরগুলো ইস্রায়েলের লোকদের কাছে এইসব ঘটনার চিরকালের স্মারক হয়ে থাকবে|” 8 ইস্রায়েলবাসীরা সেই মত যিহোশূয়র আদেশ পালন করল| তারা যর্দন নদীর মাঝখান থেকে বারো খানা পাথর তুলে নিল| বারোটি পরিবারবর্গের প্রত্যেকের জন্য একটি করে পাথর ছিল| য়েমন ভাবে প্রভু যিহোশূয়কে বলেছিলেন ঠিক তেমনি ভাবেই লোকরা পাথর বয়ে নিয়ে চলল| তারপর যেখানে তারা তাঁবু গেড়েছিল সেখানে ঐগুলো রাখল| 9 (যিহোশূয় যর্দন নদীর মাঝখানেও বারোটি পাথর রেখেছিলেন| ঠিক সেই জায়গাতেই যেখানে যাজকরা পবিত্র সিন্দুক কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন| আজও ঐ জায়গায় পাথরগুলো দেখা যায়|) 10 প্রভু যিহোশূয়কে লোকদের কি করতে হবে তা জানাতে আদেশ দিলেন| সেগুলো মোশি যিহোশূয়কে পালন করার জন্য বলেছিলেন| তাই পবিত্র সিন্দুক বহনকারী যাজকরা মাঝনদীতে দাঁড়িয়ে রইলেন যতক্ষণ না যিহোশূয় লোকদের নির্দেশ দেওয়া শেষ করলেন| লোকরা দ্রুত নদী পেরোতে লাগল| 11 তারা নদী পেরোনোর পালা শেষ করল| তারপর যাজকরা তাদের সামনে দিয়ে প্রভুর সিন্দুক বহন করে চললেন| 12 রূবেণের লোকরা, গাদ পরিবারগোষ্ঠী এবং মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেক লোকরা মোশির নির্দেশ পালন করল| এরা অন্যান্য লোকদের চোখের সামনে নদী পেরোল| এরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল| ইস্রায়েলের বাকী লোকদের তারা সাহায্য করতে যাচ্ছিল যাতে তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূখণ্ডের দখল নিতে পারে| 13 প্রায 40,000 সৈন্য যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে প্রভুর সামনে দিয়ে চলে গেল| য়িরীহোর সমতলভূমির দিকে তারা অভিযান করেছিল| 14 সেদিন থেকে প্রভু সমস্ত ইস্রায়েলবাসীদের জন্য যিহোশূয়কে একজন মহাপুরুষে পরিণত করলেন| সেদিন থেকে লোকরা তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করতে শুরু করল| য়েমন ভাবে তারা মোশিকে শ্রদ্ধা করত, সে ভাবেই তারা যিহোশূয়কে শ্রদ্ধা করতে লাগল| 15 সিন্দুকবাহী যাজকরা নদীতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন| প্রভু যিহোশূয় বললেন, 16 “যাজকদের নদী থেকে চলে আসতে বলো|” 17 যিহোশূয় সেই মতো যাজকদের আদেশ দিলেন| তিনি বললেন, “যর্দন নদী থেকে আপনারা বেরিয়ে আসুন|” 18 যাজকরা যিহোশূয়র আদেশ পালন করলেন| সিন্দুক বহন করে তারা নদী থেকে উঠে এলেন| নদীর এপারে যখন তারা পা রাখলেন তখন আবার নদী বইতে শুরু করল| আবার নদী আগের মতোই কুলপ্লাবী হয়ে উঠল| 19 প্রথম মাসের দশম দিনে তাঁরা যর্দন নদী অতিক্রম করলেন| তাঁরা য়িরীহোর পূর্ব দিকে গিল্গল নামক একটি জায়গায় তাঁবু খাটালেন| 20 তাঁরা যর্দন নদী থেকে পাওয়া বারোটি পাথর বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন| গিল্গলে যিহোশূয় সেইসব পাথর স্থাপন করলেন| 21 যিহোশূয় তাদের বললেন, “ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তানরা তাদের মাতা-পিতার কাছে জিজ্ঞাসা করবে, ‘এসব পাথরের অর্থ কি?’ 22 তোমরা তাদের বলবে, ‘এসব পাথর আমাদের মনে করিযে দেয়, কি ভাবে শুকনো জমির ওপর দিয়ে ইস্রায়েলের লোকরা যর্দন নদী পেরিয়ে গিয়েছিল| 23 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যর্দন নদীর প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন যাতে তোমরা ঐ শুকনো জমির ওপর দিয়ে পেরিয়ে য়েতে পারো; ঠিক য়েমনটি হয়েছিল, যখন প্রভু লোহিত সাগরের জলপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন যাতে আমরা ঐ অংশটি শুকনো জমির ওপর দিয়ে পেরিয়ে য়েতে পারি|’ 24 প্রভু এই কাজ করেছিলেন যাতে এই দেশের সমস্ত সম্প্রদাযের মানুষ জানতে পারে তিনি কতটা শক্তিমান| তাহলে এই দেশের সমস্ত সম্প্রদাযের মানুষ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের মহাশক্তিকে চিরকাল ভয় করে চলবে|”
1 তাই প্রভু যর্দন নদী শুকিয়ে দিলেন যতক্ষণ না সমস্ত লোক তা পেরিয়ে যায়| য়র্দ্দনের পশ্চিমে বসবাসকারী ইমোরীয় এবং ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী কনানীয়দের রাজারা এসব শুনে বেশ ভয় পেয়ে গেল| ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে লড়াই করার মতো সাহস তাদের রইল না| 2 তখন যিহোশূয়কে প্রভু বললেন, “চক্মকি পাথর থেকে ক্ষুর বানিয়ে নাও, আর সেই ক্ষুর দিয়ে ইস্রায়েলের পুরুষদের সুন্নত্ করো|” 3 সেই মতো যিহোশূয় চক্মকি পাথর থেকে ক্ষুর বানিয়ে নিয়ে জিবিথ হারালোথে ইস্রায়েলীয়দের সুন্নত্ করলেন| 4 ইস্রায়েলীয়দের সুন্নত্ করার পেছনে যিহোশূয়র একটা কারণ ছিল| ইস্রায়েলের লোকরা মিশর ছেড়ে চলে গেলে যারা সৈন্যবাহিনীতে ছিল তাদের সবাইকে সুন্নত্ করা হয়েছিল| মরুভূমিতে থাকার সময় অনেক য়োদ্ধাই প্রভুর কথা শোনেনি. তখন প্রভু তাদের প্রতিশ্রুতি দিলেন য়ে তারা ঐ দেশটি সুজলা-সুফলা রূপে দেখতে পাবে না| তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে সেই দেশই দিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, কিন্তু যারা তাঁর বাণী অগ্রাহ্য করেছিল তাদের ঈশ্বর 40 বছর মরুভূমিতে ঘুরিযেছিলেন য়ে পর্য়ন্ত না ঐ সমস্ত য়োদ্ধারা শেষ হয়| তারা মারা গেলে তাদের সন্তানরা তাদের স্থান নিল| মিশর থেকে চলে আসার পর তাদের সন্তানদের মরুভূমিতে জন্ম হয়েছিল| এদের কাউকে সুন্নত্ করা হয় নি| তাই যিহোশূয় তাদের সুন্নত্ করেছিলেন| 5 6 7 8 যিহোশূয় সকলের সুন্নত্করণ শেষ করলেন| তারা সেখানেই তাঁবু খাটিযে থেকে গেল| যতদিন পর্য়ন্ত সবাই সেরে না উঠল ততদিন তারা তাঁবুতে বিশ্রাম নিল| 9 সেই সময় প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “মিশরে তোমরা সবাই ছিলে ক্রীতদাস| এই দাসত্ব তোমাদের লজ্জিত করে রেখেছিল| আজ তোমাদের সব লজ্জা সংকোচ আমি হরণ করলাম|” যিহোশূয় সেই জায়গাটির নাম দিলেন গিল্গল| আজও সে জায়গার নাম গিল্গল থেকে গেছে| 10 ইস্রায়েলের লোকরা নিস্তারপর্ব উত্সব পালন করল| য়িরীহোর সমতলভূমিতে গিল্গল যেখানে তাঁবু খাটিযেছিল সেখানেই তারা উত্সব করল| সেই মাসের 14তম দিনে সন্ধ্যাবেলা সেই উত্সব হল| 11 নিস্তারপর্ব উত্সবের পরের দিন তারা সে দেশের উত্পন্ন খাদ্য দ্রব্যই খেযেছিল| তারা খেযেছিল খামিরবিহীন রুটি আর ভাজা দানাশস্য| 12 পরদিন সকালে আকাশ থেকে আর বিশেষ ধরণের খাদ্য বর্ষণ হল না| য়েদিন থেকে ইস্রায়েলের লোকরা কনানে উত্পন্ন খাদ্য খেতে শুরু করল, সেদিন থেকে স্বর্গ থেকে খাদ্য আসা বন্ধ হল| 13 যখন যিহোশূয় য়িরীহোর কাছাকাছি গেলেন, তিনি তাকিযে দেখলেন একজন মানুষ তরবারি হাতে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন| যিহোশূয় তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “কে আপনি? আমাদের শত্রু না মিত্র?” 14 মানুষটি বললেন, “না, আমি শত্রু নই| আমি প্রভুর সৈন্যবাহিনীর সেনাধ্যক্ষ| আমি এইমাত্র তোমার কাছে এসেছি|”তখন যিহোশূয় তাঁকে সম্মান জানাতে মাথা নীচু করে বললেন, “আমি আপনার ভৃত্য| প্রভু কি আমার জন্য কোন আদেশ দিয়েছেন?” 15 প্রভুর সেনাধ্যক্ষ বললেন, “জুতো খোলো| যেখানে তুমি দাঁড়িয়ে তা এখন পবিত্র স্থান|” তাই যিহোশূয় তাঁর আদেশ পালন করলেন|
1 য়িরীহো শহরের সমস্ত প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল| কাছেই ইস্রায়েলের লোকেরা, সেইজন্য শহরের লোকরা ভয় পেয়ে গিয়েছিল| শহর থেকে কেউ বেরোত না, শহরে কেউ আসতও না| 2 তখন প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “শোনো, আমি তোমাদের য়িরীহো দখল করতে দিচ্ছি| তোমরা রাজা আর শহরের সমস্ত য়োদ্ধাকে পরাজিত করবে| 3 দিনে একবার করে সমস্ত শহরের চারিদিকে সৈন্যদের টহল দেওয়াবে| এরকম ছয় দিন করবে| 4 পবিত্র সিন্দুকটি যাজকদের বহন করতে বলবে| সাতজন যাজককে মেষের তৈরী শিঙা নিতে বলবে| সেই সিন্দুকটির সামনে দিয়ে যাজকদের য়েতে বলবে| সপ্তম দিনে শহরটিকে সাতবার প্রদক্ষিণ করবে| ঐ দিন যাজকদের যাবার সময় শিঙা বাজাতে বলবে| 5 তারা একবার খুব জোরে শিঙা বাজাবে| সেই শিঙার শব্দ শুনতে পেলেই লোকদের চিত্কার করতে বলবে| তোমরা এই কাজ করলে শহরের প্রাচীরগুলো ভেঙ্গে পড়বে, আর তোমার লোকরাও সোজা শহরে ঢুকে পড়তে পারবে|” 6 নূনের পুত্র যিহোশূয় সেই মত যাজকদের সকলকে একত্র ডেকে বললেন, “প্রভুর পবিত্র সিন্দুক আপনারা বহন করুন| আপনাদের মধ্যে সাত জনকে শিঙা নিয়ে সিন্দুকের সামনে দিয়ে এগিয়ে য়েতে বলুন|” 7 তারপর যিহোশূয় লোকদের আদেশ দিলেন, “এবার যাও| শহরকে প্রদক্ষিণ করো| সশস্ত্র সৈন্যরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের সামনে থেকে অভিযান করবে|” 8 যিহোশূয়র কথা শেষ হলে সাত জন যাজক প্রভুর সমক্ষে যাত্রা শুরু করলেন| তাঁরা সাতটি শিঙা বহন করলেন এবং চলতে চলতে বাজাতে লাগলেন| যাজকরা তাঁদের পিছনে পিছনে প্রভুর পবিত্র সিন্দুক বয়ে নিয়ে চললেন| 9 য়ে সমস্ত যাজকরা শিঙা বাজাচ্ছিলেন সশস্ত্র সৈন্যরা তাঁদের সামনে চলে গেল| বাকী লোকরা পবিত্র সিন্দুকের পিছনে হাঁটছিল| তারা শিঙা বাজাতে বাজাতে শহর পরিক্রমা করল| 10 যিহোশূয় তাদের যুদ্ধধ্বনি দিতে বারণ করলেন| তিনি বললেন, “এখন চিত্কার কোরো না| আমি তোমাদের না বলা পর্য়ন্ত একটা কথাও বলবে না| য়েদিন বলব সেদিন চেঁচিযো|” 11 যিহোশূয়র কথা মত যাজকরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক নিয়ে একবার শহর প্রদক্ষিণ করলেন| তারপর তাঁরা তাঁবুতে ফিরে গিয়ে রাত্রি কাটালেন| 12 পরদিন খুব ভোরে যিহোশূয় ঘুম থেকে উঠলেন| যাজকরা আবার প্রভুর সিন্দুক কাঁধে তুলে নিলেন| 13 সাত জন যাজক সাতটি শিঙা নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন| তাঁরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের সামনে শিঙা বাজাতে বাজাতে এগিয়ে চললেন| তাঁদের আগে আগে চলেছে সশস্ত্র সৈন্যরা| বাকী লোকরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের পেছনে পেছনে চলছিল এবং প্রতিবার প্রদক্ষিণের পর তাদের শিঙা বাজাচ্ছিল| 14 দ্বিতীয দিন তারা সকলে একবার শহর পরিক্রমা করল| তারপর শিবিরে ফিরে এলো| দুদিন ধরে তারা প্রতিদিন এই ভাবেই কাটাল| 15 সপ্তম দিনে উষাকালে তারা উঠে পড়ল| তারা সাতবার শহর প্রদক্ষিণ করল| এর আগে এভাবেই তারা শহর প্রদক্ষিণ করেছিল, কিন্তু সেদিন তারা সাতবার শহর প্রদক্ষিণ করল| 16 সপ্তম বার তারা শহর পরিক্রমা করলে যাজক শিঙা বাজালেন| তখন যিহোশূয় আদেশ দিলেন, “এবার চিত্কার করো| প্রভু তোমাদের এই শহর দান করেছেন| 17 এই শহর এবং শহরের সবকিছু প্রভুর| শুধু গণিকা রাহব এবং তার বাড়ীর লোকরা বেঁচে থাকবে| এদের তোমরা হত্যা কোরো না, কারণ সে আমাদের দুজন গুপ্তচরকে সাহায্য করেছিল| 18 আর একথাও মনে রেখো, আর যা সব আছে আমরা ধ্বংস তো করবই, কিন্তু তোমরা কোন কিছুই নিয়ে য়েতে পারবে না| যদি তোমরা ঐসব জিনিস সঙ্গে নিয়ে আমাদের শিবিরে আসো, তবে তোমরাও ধ্বংস হয়ে যাবে| সেই সঙ্গে তোমরা ইস্রায়েলের লোকদেরও বিপদ ডেকে আনবে| 19 যত সোনা, রূপা, আর পিতল ও লোহার তৈরী জিনিসপত্র আছে সবই প্রভুর সম্পদ| সেই সব সম্পদ প্রভুর কোষাগারেই থাকবে|” 20 যাজকরা শিঙা বাজালেন| লোকরা শিঙার শব্দ শুনে চিত্কার করে উঠল| প্রাচীরগুলো ভেঙ্গে পড়ল| তারা সকলে দৌড়ে শহরের মধ্যে ঢুকে পড়ল| এই ভাবে ইস্রায়েলের লোকরা শহর দখল করে নিল| 21 শহরে যা কিছু ছিল সব তারা ধ্বংস করে ফেলল| জীবিত সব কিছুকেই তারা মেরে ফেলল| যুবক যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কাউকেই বাদ দিল না| গরু, মেষ, গাধা সকলকে তারা মেরে ফেলল| 22 যিহোশূয় গুপ্তচর দুজনের সঙ্গে কথা বললেন| তিনি বললেন, “সেই গণিকার গৃহে তোমরা যাও| তাকে এবং তার সঙ্গে যারা আছে তাদের বের করে নিয়ে এসো| তোমরা তাকে য়েমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে, সেই প্রতিশ্রুত অনুসারে কাজ করো|” 23 সেই মত দুজন বাড়ীতে ঢুকে রাহবকে বের করে আনল| তারা তার মাতা, পিতা, ভাই পরিবারের সকলকেই বের করে আনল| তাছাড়া আর যারা রাহবের সঙ্গে ছিল তাদেরও উদ্ধার করল| এদের সবাইকে তারা ইস্রায়েলের শিবিরের বাইরে একটা নিরাপদ জায়গায় রেখে দিল| 24 তারপর ইস্রায়েলবাসীরা সমস্ত শহর বালিয়ে দিল| সোনা, রূপো, পিতল আর লোহার তৈরী জিনিস ছাড়া আর সব কিছুই তারা বালিয়ে দিল| তারা ঐ জিনিসগুলি প্রভুর কোষাগারে রাখল| 25 গণিকা রাহব তার পরিবারের সকলকে এবং তার সঙ্গে আর যারা ছিল যিহোশূয় তাদের সবাইকে রক্ষা করেছিলেন| তিনি তাদের বাঁচিয়েছিলেন, কারণ রাহব যিহোশূয়র পাঠানো গুপ্তচরদের যারা য়িরীহোতে এসেছিল তাদের সাহায্য করেছিল| আজও ইস্রায়েলবাসীদের মধ্যে রাহব বাস করছে| 26 সেই সময় যিহোশূয় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| তিনি বলেছিলেন:“য়ে গড়িবে পুনরায য়িরীহো নগর, প্রভুর রোষানল পড়িবে তাহার উপর| নগরের ভিত্তি য়ে করিবে স্থাপন, জ্য়েষ্ঠতম সন্তান সে খোযাবে আপন; য়ে জন নির্মাণ করে নগরের দ্বার, কনিষ্ঠ সন্তান তার হইবে সংহার|” 27 প্রভু যিহোশূয়র সঙ্গে রইলেন| আর যিহোশূয় সারা দেশে বিখ্যাত হয়ে গেলেন|
1 কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা ঈশ্বরের আদেশ পালন করে নি| যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর একজনের নাম ছিল আখন| তার পিতার নাম কর্ম্মি, পিতামহের নাম জিমরি| আখন কিছু জিনিস রেখেছিল, য়েগুলো নষ্ট করে দেওয়া উচিত্ ছিল| সেই জন্য প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের উপর ক্রুদ্ধ হলেন| 2 তারা য়িরীহো দখল করার পর যিহোশূয় কয়েকজন লোককে অয়তে পাঠালেন| অয় বৈথেলের পূর্বদিকে বৈত্-আবনের কাছে অবস্থিত| যিহোশূয় তাদের বললেন, “তোমরা অয়তে যাও| সেই জায়গায় কি কি দুর্বল দিক আছে দেখে এসো|” সে কথা শুনে লোকরা সেই দেশে গুপ্তচরবৃত্তি করতে গেল| 3 কিছুদিন পর তারা যিহোশূয়র কাছে ফিরে এলো| তারা বলল, “অয় বেশ দুর্বল জায়গা| দখল করার জন্য আমাদের সকলের যাবার দরকার নেই| 2,000 অথবা 3,000 লোক পাঠালেই চলবে| গোটা সৈন্যবাহিনী কাজে লাগাবার দরকার নেই| খুব কম লোকই সেখানে আছে যারা আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে|” 4 প্রায 3,000 লোক অয়তে গেল| অযের লোকরা প্রায 36 জন ইস্রায়েলের লোককে হত্যা করেছিল এবং ইস্রায়েলীয়রা ভয় পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল| অযের লোকরা শহরের ফটক থেকেই তাদের তাড়া করছিল| তারা পালিয়ে গিয়েছিল যেখানে নিরেট শিলাখণ্ড থেকে পাথর কাটা হয়| অযের লোকরা তাদের হারিযে দিয়েছিল|এই সব দেখে ইস্রায়েলের লোকরা খুব ভয় পেয়ে গেল, তারা সাহস হারিযে ফেলল| 5 6 যিহোশূয় যখন এই সংবাদ পেলন তখন মনের দুঃখে তিনি তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন| পবিত্র সিন্দুকের সামনে তিনি মাটিতে মাথা নুইযে দিলেন| সন্ধ্যা পর্য়ন্ত এভাবেই তিনি কাটালেন| ইস্রায়েলের নেতারাও এভাবে মাথা হেঁট করে বসে রইল| দুঃখ বেদনা প্রকাশ করতে তারাও নিজেদের মাথায় ধুলো ছুঁড়লো| 7 যিহোশূয় বললেন, “হে প্রভু, আমার স্বামী! তুমি আমাদের সকলকে যর্দন নদী পার করিযে এখানে এনেছ| কেন তুমি এতদুর টেনে নিয়ে এসে তারপর ইমোরীয় লোকদের দিয়ে আমাদের এই সর্বনাশ করলে? আমরা য়র্দ্দনের ওপারেই তো সুখে স্বাচ্ছন্দ্য়ে থাকতে পারতাম| 8 হে প্রভু! আমি প্রাণের শপথ করে বলছি, এখন আর আমার বলার মতো কিছুই নেই| ইস্রায়েল তার শত্রুর কাছে হেরে গেছে| 9 কনানীয়রা ও অন্যান্য অধিবাসীরা সকলেই জানতে পারবে কি ঘটেছে| এরপর তারা আমাদের আক্রমণ করবে, আমাদের মেরে ফেলবে, তখন তোমার মহানাম রক্ষা করতে তুমি কি করবে?” 10 প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “কেন তোমরা মাটিতে মাথা নুইযে বসে আছ? উঠে দাঁড়াও| 11 ইস্রায়েলের লোকরা আমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে| য়ে চুক্তি পালন করতে তাদের আদেশ দিয়েছিলাম তারা তা ভঙ্গ করেছে| য়ে সব জিনিস তাদের ধ্বংস করতে আদেশ করেছিলাম, তার মধ্যে থেকে কিছু জিনিস তারা নিয়েছে| আর আমার সম্পত্তি চুরি করেছে| তারা মিথ্যাবাদী| তারা সেসব নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিয়ে গিয়েছে| 12 সেই জন্য ইস্রায়েলীয় সৈন্য যুদ্ধ ছেড়ে পালিয়ে এসেছে| কারণ তারা অন্যায় করেছিল| তাদের শেষ করে দেওয়াই উচিত্| আমি তোমাদের আর সাহায্য করব না| যদি তোমরা আমার নির্দেশমত প্রত্যেকটি জিনিস নষ্ট না কর, তাহলে আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব না| 13 “যাও! তাদের পবিত্র করো| তাদের বলো, ‘তোমরা নিজেদের শুচি করো| আগামীকালের জন্য তৈরী হও| ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর বয়ং বলেছেন য়ে কিছু লোক তাঁর নির্দেশ মতো জিনিসগুলো নষ্ট না করে সেগুলো রেখে দিয়েছে| সেগুলো ফেলে না দিলে কিছুতেই তোমরা শত্রুদের হারাতে পারবে না| 14 “কাল সকালে তোমরা সবাই প্রভুর সামনে অবশ্যই দাঁড়াবে| সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী প্রভুর সামনে দাঁড়াবে| এরপর তিনি একটি পরিবারগোষ্ঠী বেছে নেবেন| তারপর সেই পরিবারগোষ্ঠীটি প্রভুর সামনে দাঁড়াবে| এরপর প্রভু সেই পরিবারগোষ্ঠীর প্রতিটি বংশ খুঁটিযে দেখবেন এবং একটি বংশ বেছে নেবেন| তারপর তিনি সেই বংশের প্রতিটি সদস্যকে বেছে নেবেন| 15 য়ে ব্যক্তি ঐ সমস্ত জিনিস রেখে দিয়েছে, যা আমাদের নষ্ট করে দেওয়া উচিত্ ছিল, সে ধরা পড়বে| তারপর তাকে পুড়িয়ে মারা হবে এবং তার সঙ্গে তার যাবতীয় জিনিসপত্র পুড়িয়ে ফেলা হবে| ব্যক্তিটি প্রভুর সঙ্গে য়ে চুক্তি হয়েছিল তা ভঙ্গ করেছে| ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি সে খুব অন্যায় করেছে|”‘ 16 পরদিন খুব ভোরে যিহোশূয় ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর কাছে নিয়ে গেলেন| সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী প্রভুর সামনে দাঁড়াল এবং প্রভু যিহূদার পুরো পরিবারগোষ্ঠীকে মনোনীত করলেন| 17 সুতরাং যিহূদার সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী প্রভুর সামনে দাঁড়াল| তিনি সেরহীয বংশকে মনোনীত করলেন এবং সেই বংশের প্রতিটি পরিবার প্রভুর সামনে দাঁড়াল| সেই পরিবারগুলোর মধ্য থেকে জিমরি পরিবারকে বেছে নেওয়া হল| 18 তারপর যিহোশূয় ঐ পরিবারভুক্ত সমস্ত লোককে প্রভুর সামনে দাঁড়াতে বললেন| প্রভু কর্ম্মির পুত্র আখনকে বেছে নিলেন| (কর্ম্মি হচ্ছে জিমরির পুত্র আর জিমরি হচ্ছে জেরার পুত্র|) 19 তারপর যিহোশূয় আখনকে বললেন, “বাছা, ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরকে সম্মান করো| তাঁর কাছে তুমি তোমার পাপ স্বীকার করো| যা করেছ আমার কাছে বলো| আমার কাছে কোন কিছু লুকোতে য়েও না|” 20 আখন উত্তর দিল, “এটা সত্য়ি! ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরের কাছে আমি পাপ করেছি| আমি যা করেছি তা এই: 21 আমরা য়িরীহো শহর এবং সেই শহরের সব কিছুই দখল করেছিলাম| আমি বাবিলের একটা সুন্দর শাল, প্রায 5 পাউণ্ড রূপো আর প্রায এক পাউণ্ড সোনাও দেখেছিলাম| আমি সেগুলো আমার নিজের জন্য রেখে দিতে চেয়েছিলাম| তাই আমি তুলে নিয়েছিলাম| সেগুলো আমার তাঁবুর নীচে মাটির তলায় লুকিয়ে রেখেছি| ওখানেই সেগুলো আপনি পাবেন| আর রূপো আছে শালের নীচে|” 22 সুতরাং যিহোশূয় কিছু লোককে তাঁবুতে পাঠালেন| তারা ছুটে তাঁবুতে গিয়ে ঐসব লুকানো জিনিস খুঁজে পেল| রূপো ছিল শালের তলায়| 23 তারা তাঁবুর ভেতর থেকে সমস্ত জিনিস বের করে আনল| তারা সেগুলো যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের কাছে নিয়ে গেল| প্রভুর সামনে তারা সেগুলো মাটিতে ফেলে দিল| 24 তারপর যিহোশূয় এবং সমস্ত লোক সেরহের পুত্র আখনকে আখোর উপত্যকার দিকে নিয়ে গেল| তারা সোনা, রূপো, শাল, আখনের সব ছেলেমেয়ে, তার গরু, মেষ, গাধা, তাঁবু আর তার যথাসর্বস্ব হস্তগত করল| তারা এই সমস্ত জিনিস এবং আখনকে আখোর উপত্যকায নিয়ে গেল| 25 পরে দলপতি যিহোশূয় বললেন, “তুমি আমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছ| এখন প্রভু তোমাকে কষ্ট দেবেন|” তারপর সকলে আখন এবং তার পরিবারের সকলকে পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে মেরে ফেলল| তাদের তারা পুড়িয়ে ফেলল| তার সঙ্গে যা কিছু ছিল সেগুলোও পুড়িয়ে ফেলল আখনকে পুড়িয়ে মারার পর তারা তার মৃত দেহের ওপর 26 অনেক পাথর চাপিয়ে দিল| সেই সব পাথর আজও সেখানে দেখা যাবে| এভাবেই ঈশ্বর আখনের বিনাশ ঘটালেন| এই কারণে ঐ জায়গাটিকে বলা হয় আখোর উপত্যকা| এর পর ইস্রায়েলের ওপর প্রভুর ক্রোধ প্রশমিত হয়|
1 প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “ভয় পেও না| আশা ছেড়ো না| তোমার সমস্ত য়োদ্ধাকে নিয়ে অযে চলে যাও| অযের রাজাকে পরাজিত করার জন্য আমি তোমাদের সাহায্য করব| আমি তোমাদের কাছে রাজা, রাজার লোকদের, তার শহর এবং তার দেশ সবকিছু দিচ্ছি| 2 তোমরা য়িরীহো আর সে দেশের রাজার প্রতি যা করেছিলে ঠিক সেই রকমই তোমরা অয় এবং সেই শহরের রাজার প্রতি করবে| শুধু এইবার তোমরা সব ধনসম্পদ এবং পশুসমুহ নিয়ে যাবে এবং ওগুলো তোমাদের জন্যই রাখবে| এখন তোমাদের কয়েকজন সৈন্যকে শহরের পিছনে লুকিয়ে থাকতে বলো|” 3 তাই যিহোশূয় সমস্ত সৈন্যবাহিনীকে অযের দিকে নিয়ে গেলেন| তিনি তাঁর সেরা 30,000 য়োদ্ধাকে বেছে নিলেন| রাত্রে তিনি তাদের পাঠালেন| 4 যিহোশূয় তাদের এই আদেশ দিলেন: “তোমাদের যা বলছি তা মন দিয়ে শোন| শহরের পেছন দিকে তোমরা লুকিয়ে থাকবে| আক্রমণের জন্য অপেক্ষা করবে| শহর থেকে বেশী দূরে যাবে না| সবসময় লক্ষ্য রাখবে আর তৈরী থাকবে| 5 আমি সকলকে নিয়ে শহরের দিকে যাত্রা করব| শহরের লোকরা আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বেরিয়ে আসবে| ঠিক আগের মতো আমরা ছু পালিয়ে আসব| 6 তারা আমাদের শহর থেকে তাড়িয়ে দেবে| তারা ভাববে য়ে আমরা ঠিক আগের মতোই ওদের কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছি| সেই ভাবে আমরা পালিয়ে যাব| 7 তারপর তোমরা গুপ্তস্থান থেকে বেরিয়ে আসবে আর শহর অধিকার করবে| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর বয়ং তোমাদের জয় করার শক্তি দান করবেন| 8 “প্রভু যা যা বলেন সেই অনুসারে কাজ করবে| আমার দিকে লক্ষ্য রেখো| আমি তোমাদের শহর দখলের আদেশ দেব| শহরের দখল নিয়ে একে তোমরা বালিয়ে দেবে|” 9 তারপর যিহোশূয় তাদের লুকানোর জায়গায় পাঠিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন| তারা বৈথেল এবং অযের মধ্যবর্তী একটি জায়গায় গেল| জায়গাটি অযের পশ্চিম দিকে| যিহোশূয় তাঁর লোকদের সঙ্গে রাত কাটালেন| 10 পরদিন খুব সকালে যিহোশূয় সব লোকদের এক সঙ্গে জড়ো করলেন| তারপর যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের দলপতিরা তাদের অযের দিকে নিয়ে গেলেন| 11 য়িহোশূয়ের সঙ্গে য়ে সব সৈন্য ছিল, তারা অয় অভিযান করল| শহরের সামনে এসে তারা দাঁড়াল| সৈন্যরা শহরের উত্তরে তাঁবু খাটাল| অয় এবং সৈন্যবাহিনীর মধ্যে ছিল একটি উপত্যকা| 12 তারপর যিহোশূয় প্রায 5,000 সৈন্য বেছে নিলেন| তিনি তাদের শহরের পশ্চিমে বৈথেল এবং অযের মাঝখানে লুকিয়ে থাকার জন্য পাঠিয়ে দিলেন| 13 এই ভাবে যিহোশূয় যুদ্ধের জন্য তাদের প্রস্তুত করলেন| শহরের উত্তরে তাদের প্রধান ঘাঁটি| অন্যান্যরা লুকোল পশ্চিম দিকে| সেই রাত্রে যিহোশূয় উপত্যকায গেলেন| 14 পরে অযের রাজা ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনীকে দেখতে পেলেন| ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে রাজা এবং তাঁর লোকরা বেরিয়ে পড়ল| অযের রাজা যর্দন উপত্যকার কাছে শহরের পূর্বদিকে গেলেন| তাই তিনি শহরের পেছন দিকে লুকিয়ে থাকা ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের দেখতে পেলেন না| 15 অযের সৈন্যবাহিনী যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষকে তাড়িয়ে দিল| তারা যেখানে মরুভূমি সেই পূর্বদিকে ছুট লাগাল| 16 শহরের সকলে হৈ-হৈ করে যিহোশূয় ও তাঁর সৈন্যবাহিনীকে তাড়া করতে লাগল| সব লোক শহর ছেড়ে চলে গেল| 17 অয় এবং বৈথেলের সব লোক ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনীকে তাড়িয়ে দিল| শহর ফাঁকা পড়ে রইল| শহর রক্ষা করার জন্য কেউ রইল না| 18 তারপর প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “অয় শহরের দিকে বর্শা উঁচিযে ধরো| এই শহর আমি তোমাদের হাতে তুলে দেব|” তাঁর কথা মতো যিহোশূয় অয় শহরের দিকে বর্শা উঁচিযে ধরলেন| 19 ইস্রায়েলের য়ে সব লোকরা লুকিয়েছিল তারা তা দেখল| তারা তাদের লুকোবার জায়গা থেকে দ্রুত বেরিয়ে শহরের দিকে ছুটে গেল, শহরে ঢুকে পড়ল আর শহরটা দখল করে নিল| তারপর সৈন্যরা শহর পুড়িয়ে দেবার জন্য আগুন লাগিয়ে দিল| 20 অযের লোকরা পেছনে তাকিযে দেখল তাদের শহর জ্বলছে| তারা দেখল শহর থেকে আকাশের দিকে ধোঁযা উঠছে| এই দেখে তারা দুর্বল হয়ে পড়ল, সাহস হারিযে ফেলল| তারা ইস্রায়েলীয়দের তাড়াবার প্রচেষ্টা ছেড়ে দিল| ইস্রায়েলীয়রাও আর ছোটাছুটি না করে ফিরে দাঁড়াল আর অযের লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগল| অযের লোকদের পালাবার মতো কোন নিরাপদ জায়গা ছিল না| 21 যিহোশূয় এবং তাঁর লোকরা দেখল য়ে ঐ সৈন্যরা শহর দখল করে নিয়েছে| তারা দেখল শহর থেকে ধোঁযা ওপরে উঠছে| এই সময় তারা পালিয়ে না গিয়ে ঘুরে দাঁড়াল, অযের লোকদের দিকে ছুটে গিয়ে যুদ্ধ করল| 22 তারপর যারা লুকিয়েছিল তারাও ফিরে এসে যুদ্ধে সাহায্য করল| অযের লোকদের সামনে পিছনে সব দিকেই ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনী| তারা ফাঁদে আটকা পড়ল| ইস্রায়েলীয়রা তাদের পরাজিত করল| অযের সমস্ত লোক নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্য়ন্ত তারা যুদ্ধ করতে লাগল| শত্রু পক্ষের একটা লোকও পালাতে পারল না| 23 কিন্তু অযের রাজাকে বাঁচিয়ে রাখা হল| য়িহোশূয়ের লোকরা তাকে য়িহোশূয়ের কাছে নিয়ে এল| 24 যুদ্ধের সময় ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনী অযের লোকদের মাঠে-ঘাটে মরুভূমির মধ্যে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল| তারপর তারা সেই সব জায়গায় তাদের হত্যা করেছিল| তারপর তারা অযে ফিরে গিয়ে সেখানে য়েসব লোক তখনও বেঁচে ছিল তাদের হত্যা করল| 25 সেদিন অযের সমস্ত লোক মারা গেল| 12,000 পুরুষ ও স্ত্রীলোক মারা গিয়েছিল| 26 যিহোশূয় তাঁর লোকদের শহর ধ্বংস করার সংকেত দিতেই অয় শহরের দিকে বল্লম উঁচু করে ধরেছিলেন| শহরের সমস্ত লোক বিনষ্ট না হওয়া পর্য়ন্ত যিহোশূয় এভাবেই দাঁড়িয়েছিলেন| 27 ইস্রায়েলের লোকরা শহরের সমস্ত জীবজন্তু এবং অন্যান্য জিনিসপত্র নিজেদের ব্যবহারের জন্য রেখে দিয়েছিল| প্রভু যিহোশূয়কে নির্দেশ দেবার সময় তাদের এই সব রেখে দিতেই বলেছিলেন| 28 যিহোশূয় অয় শহরকে বালিয়ে দিলেন| শহরটা কতগুলি পাথরের স্তূপে পরিণত হল| আর কিছুই সেখানে ছিল না| আজও শহরটা সেই রকমই পড়ে আছে| 29 যিহোশূয় অযের রাজাকে একটা গাছে ফাঁসি দিলেন| সন্ধ্য়ে পর্য়ন্ত তাকে ঝুলিয়ে রাখলেন| সূর্য় অস্ত গেলে যিহোশূয় তাদের গাছ থেকে দেহটাকে নামাতে বললেন| শহরের ফটকের কাছে তারা দেহটাকে ছুঁড়ে দিল| তারপর প্রচুর পাথর দিয়ে তারা দেহটাকে চাপা দিল| সেই পাথরের স্তূপ আজও দেখা যাবে| 30 তারপর যিহোশূয় ইস্রায়েলের প্রভু, ঈশ্বরের স্মরণে একটি বেদী নির্মাণ করলেন| এবল পর্বতের চূড়ায় তিনি এই বেদী তৈরী করেছিলেন| 31 প্রভুর দাস মোশি ইস্রায়েলের লোকদের জানিয়েছিলেন কি ভাবে বেদী তৈরী করতে হবে| মোশির বিধিপূস্তকে পরিষ্কার করে লেখা ছিল বেদীর প্রস্তুত প্রণালী| সেই ভাবেই যিহোশূয় বেদী তৈরী করলেন| কাটা হয়নি এমন পাথর দিয়েই বেদী তৈরী হয়েছিল| ঐ পাথরগুলির ওপর কোন লৌহস্তম্ভ কখনও ব্যবহার করা হয় নি| সেই বেদীতে তারা প্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি উত্সর্গ করল| তারা মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করল| 32 ঐখানে যিহোশূয় পাথরগুলোর ওপরে মোশির বিধিগুলো লিখে দিলেন| ইস্রায়েলের সমস্ত লোক যাতে সেগুলো পড়ে সেই জন্যই তিনি লিখে দিয়েছিলেন| 33 প্রবীণরা, উচ্চপদস্থ কর্মীরা, বিচারকরা এবং সমস্ত মানুষ পবিত্র সিন্দুকটিকে ঘিরে দাঁড়াল| প্রভুর পবিত্র সাক্ষ্যসিন্দুক বহনকারী লেবীয় যাজকদের সামনে তারা দাঁড়িয়েছিল| অর্ধেক লোক দাঁড়িয়েছিল এবল পর্বতের চূড়ার সামনে আর বাকী অর্ধেক দাঁড়িয়েছিল গরিষীম পর্বতের চূড়ার সামনে| প্রভুর দাস মোশি তাদের এভাবেই দাঁড়াতে বলেছিলেন| তারা যাতে প্রভুর আশীর্বাদ পায় সেই জন্য তিনি তাদের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন| 34 তারপর যিহোশূয় বিধির প্রতিটি কথা পড়ে শোনালেন| তিনি সমস্ত আশীর্বাদ আর সমস্ত অভিশাপ “বিধিপুস্তকে” য়ে ভাবে লেখা আছে সেই ভাবেই পড়ে শোনালেন| 35 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক সেখানে জড়ো হয়েছিল| সমস্ত স্ত্রীলোক, শিশু আর তাদের সঙ্গে বাস করত য়েসব বিদেশী মানুষ তারাও সেখানে ছিল| মোশির প্রতিটি নির্দেশ যিহোশূয় পড়ে শোনালেন|
1 যর্দন নদীর পশ্চিম তীরের যত রাজ্য় ছিল তাদের রাজারা সমস্ত ঘটনা শুনেছিল| এই সব রাজাই হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয় দেশের লোকদের রাজা| তারা পাহাড়ী জায়গায় এবং সমতল ভূমিতে থাকত| তারা ভূমধ্যসাগরের ধার ঘেঁষে লিবানোন পর্য়ন্ত ছড়িয়ে থাকা অঞ্চলেও বাস করত| 2 সমস্ত রাজা এক হল| তাঁরা যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করার পরিকল্পনা করল| 3 যিহোশূয় কিভাবে য়িরীহো এবং অয় জয় করেছিলেন, সে সব গিবিয়োন শহরের লোকরা শুনেছিল| 4 তাই তারা ইস্রায়েলীয়দের কি ভাবে বোকা বানানো যায় সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করল| তাদের ছকটা ছিল এরকম; ফাটা, ভাঙ্গা যত চামড়ার বোতল ছিল তারা জড়ো করবে| এই সব দ্রাক্ষারসের চামড়ার খোল পশুদের পিঠে চাপিয়ে দেবে| তারা পুরানো থলেগুলোও পশুদের পিঠে চাপাবে যাতে মনে হয় য়ে তারা অনেক দূর থেকে ভ্রমণ করে এসেছে| 5 লোকরা পাযে পুরানো জুতো পরল| তাদের পুরানো কাপড়চোপড় পরল| তারা কয়েকটি শুকনো এবং ছাতাপড়া রুটি জোগাড় করল| তাই লোকগুলিকে দেখে মনে হচ্ছিল য়েন তারা অনেক দূর থেকে এসেছে| 6 তারপর এই লোকরা ইস্রায়েলবাসীদের তাঁবুর দিকে এগিয়ে গেল| এই শিবিরটি ছিল গিল্গলের কাছে|লোকগুলি য়িহোশূয়ের কাছে গেল এবং তাঁকে বলল, “আমরা অনেক দূরের একটি দেশ থেকে এসেছি| আমরা আপনাদের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি স্থাপন করতে চাই|” 7 ইস্রায়েলের লোকরা এই হিব্বীয়দের বলল, “হতেও তো পারে য়ে, আপনারা আমাদের বোকা বানাতে চাইছেন| আপনারা হয়তো আমাদের দেশের কাছেই থাকেন| কিন্তু আমরা আপনাদের সঙ্গে কোন শান্তির চুক্তি করতে পারি না, যতক্ষণ না জানতে পারছি, আপনারা কোথা থেকে আসছেন|” 8 হিব্বীয়রা যিহোশূয়কে বলল, “আমরা আপনার ভৃত্য|”কিন্তু যিহোশূয় জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কে? তোমরা কোথা থেকে আসছ?” 9 তারা বলল, “আমরা আপনার ভৃত্য| আমরা অনেক দূরের একটি দেশ থেকে আসছি| আমরা এখানে এসেছি কারণ আমরা প্রভু, আপনাদের ঈশ্বরের, মহাশক্তি সম্বন্ধে শুনেছি| আমরা তাঁর সমস্ত কার্য়কলাপ জানতে পেরেছি| মিশরে তিনি কি কি করেছিলেন আমরা শুনেছি| 10 আমরা আরো শুনেছি তিনি যর্দন নদীর পূর্বতীরে ইমোরীয় জাতির দুজন রাজাকে পরাজিত করেছিলেন| একজন হিষ্বোনের রাজা সীহোন, অন্যজন বাশনের রাজা ওগ| হিষ্বোন এবং বাশন অষ্টারোত্ দেশে অবস্থিত| 11 তাই আমাদের প্রবীণরা ও অন্য সকলে বলেছিলেন, ‘ভ্রমণের জন্য যথেষ্ট খাদ্য নিয়ে য়েও| ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে দেখা করো| তাদের বোলো, “আমরা তোমাদের ভৃত্য| আমাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করো|” 12 “এই দেখুন, আমাদের রুটি কি রকম শুকনো হয়ে গেছে| যখন আমরা বেরিয়েছিলাম সে সব ছিল গরম আর টাটকা| কিন্তু এখন সব শুকিয়ে বাসি হয়ে গেছে| 13 এই দেখুন, আমাদের চামড়ার দ্রাক্ষারসের পাত্রগুলো| যখন বেরিয়েছিলাম তখন এগুলো ছিল নতুন দ্রাক্ষারসে ভর্তি| কিন্তু আজ দেখ, সব ফেটে গেছে, বাসি হয়ে গেছে| আমাদের পোশাক-আশাক, চটি-জুতো সব কেমন হয়ে গেছে দেখছেন তো| দেখুন, এই লম্বা সফরে আমাদের পরনের কাপড়-চোপড়ের দশা, প্রায জরাজীর্ণ|” 14 লোকগুলো সত্য়ি কথা বলছে কিনা ইস্রায়েলের লোকরা যাচাই করতে চাইল| তাই তারা রুটিটি চেখে দেখল, কিন্তু তাদের প্রভুকে জিজ্ঞাসা করল না য়ে ওরকম ক্ষেত্রে তাদের কি করা উচিত্| 15 যিহোশূয় তাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে রাজী হলেন| তিনি তাদের থাকতে দিতে রাজী হলেন| ইস্রায়েলের দলপতিরা য়িহোশূয়ের প্রতিশ্রুতি রাখবার শপথ নিল| 16 তিন দিন পর ইস্রায়েলের লোকরা জানতে পারল য়ে ওরা তাদের শিবিরের খুব কাছাকাছিই বাস করত| 17 তাই ইস্রায়েলীয়রা ওদের বসবাসের জায়গা দেখতে গেল| তৃতীয় দিনে তারা গিবিয়োন, কফীরা, বেরোত্ আর কিরিযত্-য়িযারীম এই সব শহরে এল| 18 কিন্তু ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনী ঐসব শহরে গিয়ে যুদ্ধ করতে চাইল না| তারা ওদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিল| ইস্রায়েলের দলপতিরা প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সামনে গিবিয়োনদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিল|লোকরা অবশ্য দলপতিদের চুক্তির বিরুদ্ধে নালিশ করেছিল| 19 কিন্তু দলপতিরা বলল, “আমরা গিবিযোনদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি| ইস্রায়েলের প্রভু ও ঈশ্বরের সামনে আমরা কথা দিয়েছি| আমরা এখন তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব না| 20 আমাদের এই ভাবে চলতে হবে| তাদের জীবিত থাকতে দিতেই হবে| আমরা তাদের আঘাত করতে পারি না; দিলে, ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি ভাঙ্গার জন্য আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ হবেন| 21 তারা বেঁচে থাকুক| কিন্তু তারা আমাদের ভৃত্য হয়ে বেঁচে থাকবে| তারা আমাদের কাঠ কেটে দেবে, আমাদের সকলের জন্য জল বয়ে দেবে|” তাই দলপতিরা ওদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি ভাঙ্গল না| 22 যিহোশূয় গিবিয়োনদের ডাকলেন| তিনি বললেন, “কেন তোমরা আমাদের কাছে মিথ্যা কথা বললে? আমাদের শিবিরের কাছেই তো তোমাদের দেশ| কিন্তু তোমরা বলেছিলে য়ে তোমরা দূর দেশ থেকে এসেছ| 23 এখন তোমাদের অনেক দুর্গতি আছে| তোমরা সবাই আমাদের ক্রীতদাস হবে| তোমাদের লোকরা আমাদের কাঠ কেটে দেবে| ঈশ্বরের গৃহেরজন্য জল বয়ে আনবে|” 24 গিবিয়োনের লোকরা বলল, “আমরা মিথ্যা কথা বলেছিলাম কারণ আমাদের ভয় ছিল| আপনারা আমাদের মেরে ফেলবেন| আমরা শুনেছি ঈশ্বর তাঁর দাস মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন এই দেশ আপনাদের হাতে তুলে দিতে| ঈশ্বর আপনাকে এদেশের সমস্ত লোককে হত্যা করতে বলেছিলেন| তাম্প আমরা মিথ্যা কথা বলেছিলাম| 25 এখন আমরা আপনার দাস| যা ভালো বুঝবেন তাই করবেন|” 26 তাই গিবিয়োনের লোকরা ক্রীতদাস হয়ে গেল| যিহোশূয় তাদের বাঁচতে দিলেন| ইস্রায়েলীয়দের তিনি মেরে ফেলতে দিলেন না| 27 যিহোশূয় গিবিয়োনদের ইস্রায়েলীয়দের ক্রীতদাস করে দিয়েছিলেন| তারা কাঠ কেটে আনত, ইস্রায়েলীয়দের জন্য জল বয়ে আনত| তারাও প্রভুর বেদীর জন্য কাঠ কেটে আনত এবং জল বয়ে আনত| প্রভু যেখানেই বেদী স্থাপনের জায়গা পছন্দ করতেন সেখানেম্প তাদের জল বয়ে আনতে হত| ঐসব লোক আজও ক্রীতদাস হয়ে রয়েছে|
1 সেই সময় জেরুশালেমের রাজা ছিল অদোনীষেদক| রাজা জানতে পেরেছিল য়ে, যিহোশূয় অয় শহরকে পরাস্ত করেছিলেন এবং ধ্বংস করে দিয়েছেন| সে জানতে পারল য়িরীহো আর সে দেশের রাজারও একই হাল করেছিলেন যিহোশূয়| সে এটাও জেনেছিল, গিবিয়োনের লোকরা ইস্রায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে| তারা জেরুশালেমের খুব কাছাকাছিই রয়েছে| 2 এসব জেনে অদোনীষেদক এবং তার প্রজারা বেশ ভয় পেয়ে গেল| অযের মতো গিবিয়োন তো ছোটখাট শহর নয়| গিবিযোন খুব বড় শহর, একে মহানগরী বলা যায়| সেই নগরের সকলেই ছিল বেশ ভালো য়োদ্ধা| সেই নগরেরও এরকম অবস্থা শুনে রাজা তো বেশ ঘাবড়ে গেল| 3 জেরুশালেমের রাজা অদোনীষেদক হিব্রোণের রাজা হোহমের সঙ্গে কথা বলল| তাছাড়া য়র্মূতের রাজা পিরাম, লাখীশের রাজা যাফিয এবং ইগ্লোনের রাজা দবীর এদের সঙ্গেও সে কথা বলল| জেরুশালেমের রাজা এদের কাছে অনুনয় করে বলল, 4 “তোমরা আমার সঙ্গে চলো| গিবিয়োনদের আক্রমণ করতে তোমরা আমাকে সাহায্য করো| গিবিয়োনের লোকরা যিহোশূয় ও ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে|” 5 সেই জন্য পাঁচজন ইমোরীয় রাজার সৈন্যবাহিনী এক হলো| (এই পাঁচজন হলো জেরুশালেম, হিব্রোণ, য়র্মূত, লাখীশ এবং ইগ্লোনের রাজা|) সৈন্যদল গিবিযোনের দিকে যাত্রা করল| তারা শহর ঘিরে ফেলল এবং যুদ্ধ শুরু করল| 6 গিবিয়োনবাসীরা যিহোশূয়র কাছে খবর পাঠাল| সেই সময় যিহোশূয় গিল্গলে তাঁর শিবিরে ছিলেন| খবরটা এই: “আমরা আপনার ভৃত্য| আপনি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন না| আমাদের বাঁচান| তাড়াতাড়ি আসুন| পাহাড়ী দেশ থেকে সমস্ত ইমোরীয় জাতির রাজা সৈন্যসামন্ত নিয়ে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছে|” 7 খবর পেয়ে যিহোশূয় সসৈন্যে গিল্গল থেকে বেরিয়ে পড়লেন| তাঁর সঙ্গে ছিল সেরা সৈনিকের দল| 8 প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “ওদের সৈন্যসামন্ত দেখে ভয় পেও না| আমি তোমাদের জিতিযে দেব| ওরা কেউ তোমাদের পরাজিত করতে পারবে না|” 9 সৈন্যদল নিয়ে যিহোশূয় সারারাত গিবিয়োনে অভিযান চালালেন| শত্রুরা জানতে পারল না, যিহোশূয় আসছেন| তাই যিহোশূয় এবং তাঁর সৈন্যরা হঠাত্ তাদের আক্রমণ করল| 10 যখন ইস্রায়েল আক্রমণ করল তখন প্রভু সেই সৈন্যদের হতবাক করে দিলেন| তারা পরাজিত হল| ইস্রায়েলীয়দের কাছে এটা একটা মস্ত বড় জয়| তারা শত্রুদের গিবিয়োন থেকে বৈত্-হোরোণের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে গেল| ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা অসেকা এবং মক্কেদা পর্য়ন্ত যাবার পথে যত লোকজন ছিল সবাইকে হত্যা করল| 11 তারপর তারা বৈত্-হোরোণ থেকে অসেকা পর্য়ন্ত লম্বা রাস্তাটি বরাবর শত্রুদের পেছনে পেছনে ধাওযা করতে করতে গেল| তাদের এভাবে তাড়া করার সময় প্রভু আকাশ থেকে শিলাবৃষ্টি ঝরালেন| বড় বড় শিলার ঘাযে অনেক শত্রুই মারা গেল| ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের তরবারির ঘাযে যত না মারা পড়ল, তার চেয়ে ঢ়েব বেশী মারা পড়ল শিলা বৃষ্টিতেই| 12 সেই দিন প্রভু ইস্রায়েলের কাছে ইমোরীয়দের পরাজয় ঘটালেন| সেই দিন যিহোশূয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন এবং তারপর সমস্ত ইস্রায়েলবাসীদের সামনে আদেশ করলেন:“হে সূর্য়, তুমি গিবিয়োনের উপরে থামো| আর হে চন্দ্র, তুমি অযালোন উপত্যকায চুপ করে থাকো|” 13 তাই সূর্য় সরল না| চন্দ্রও নড়ল না যতক্ষণ না লোকরা শত্রুদের হারায়| এই কাহিনী যাশের গ্রন্থে লেখা আছে| সূর্য় মধ্যগগনে স্থির হয়ে গিয়েছিল, গোটা দিনটা সে আর ঘুরল না| 14 এরকম আগে কখনও হয় নি| পরেও কখনও হয় নি| সেদিন প্রভু একটি লোকের বাধ্য হয়েছিলেন| সত্য়িই, প্রভু সেদিন ইস্রায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন| 15 এরপর যিহোশূয় সৈন্যদের নিয়ে গিল্গলের শিবিরে ফিরে এলেন| 16 কিন্তু যুদ্ধের সময় ঐ পাঁচ জন রাজা পালিয়ে গিয়েছিল| মক্কেদার কাছে একটা গুহার মধ্যে তারা লুকিয়েছিল| 17 তবে এক জন তাদের গুহায় লুকোতে দেখতে পেয়ে গিয়েছিল| যিহোশূয় সব জানতে পারলেন| 18 যিহোশূয় বললেন, “বড় বড় পাথর দিয়ে গুহামুখ বন্ধ করে দাও| কিছু লোককে গুহা পাহারায় রেখে দাও| 19 কিন্তু তোমরা সেখানেই য়েন থেমে থেকো না| শত্রুদের তাড়া করতেই থাকো| পেছন থেকে তাদের আক্রমণ করতেই থাকো| তোমরা শত্রুদের কিছুতেই তাদের শহরে ফিরে য়েতে দেবে না| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তাদের উপর তোমাদের জয়ী হতে দিয়েছেন|” 20 তারপর যিহোশূয় আর ইস্রায়েলবাসীরা শত্রুদের হত্যা করলেন| কিন্তু কয়েকজন শত্রু উঁচু প্রাচীর ঘেরা কয়েকটি শহরে গেল এবং সেই খানেই নিজেদের লুকিয়ে রাখল| তাদের আর হত্যা করা গেল না| 21 যুদ্ধের পর যিহোশূয়ের লোকরা তাঁর কাছে মক্কেদায ফিরে এল| সেই দেশের কোন লোকই ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলতে সাহস করে নি| 22 যিহোশূয় বললেন, “গুহামুখ থেকে পাথরগুলো সরিয়ে দাও| ঐ পাঁচ জন রাজাকে আমার কাছে আনো|” 23 তাই য়িহোশূয়ের লোকরা পাঁচজন রাজাকে গুহার ভেতর থেকে বের করে আনল| তারা ছিল জেরুশালেম, হিব্রোণ, য়র্মূত, লাখীশ এবং ইগ্লোনের রাজা| 24 তারা পাঁচজন রাজাকে য়িহোশূয়ের সামনে হাজির করল| যিহোশূয় তাঁর লোকদের সেখানে আসতে বললেন| সৈন্য দলের প্রধানদের তিনি বললেন, “তোমরা এদিকে এসো| এই রাজাদের গলায তোমাদের পা দাও|” তাই সৈন্যদলের প্রধানরা কাছে সরে এলো এবং তাদের পা এইসব রাজাদের গলায রাখল| 25 তারপর যিহোশূয় তাঁর লোকদের বললেন, “তোমরা শত্রু হও, সাহসী হও| ভয় পেও না| ভবিষ্যতে শত্রুদের সঙ্গে যখন তোমরা যুদ্ধ করবে তখন তাদের প্রতি প্রভু কি করবেন তা আমি তোমাদের দেখাচ্ছি|” 26 তারপর যিহোশূয় পাঁচ জন রাজাকে হত্যা করলেন| পাঁচটা গাছে পাঁচ জনকে ঝুলিয়ে দিলেন| সন্ধ্য়ে পর্য়ন্ত এই ভাবেই তিনি তাদের রেখে দিলেন| 27 সূর্য়াস্তের সময় যিহোশূয় তাঁর লোকদের গাছ থেকে দেহগুলোকে নামাতে বললেন| তাই তারা সেইগুলো ঐ গুহার ভেতরেই ছুঁড়ে দিল| য়ে গুহাতে রাজারা লুকিয়েছিল তার মুখটা বড় বড় পাথরে ঢেকে দিল| সেই দেহগুলো আজ পর্য়ন্ত গুহার ভেতরে আছে| 28 সেদিন যিহোশূয় মক্কেদা শহর জয় করলেন| শহরের রাজা ও লোকদের যিহোশূয় বধ করলেন| এক জনও বেঁচে রইল না| যিহোশূয় য়িরীহোর রাজার য়ে দশা করেছিলেন, মক্কেদার রাজারও সে রকম দশা করলেন| 29 তারপর লোকদের নিয়ে যিহোশূয় মক্কেদা থেকে বেরিয়ে পড়লেন| তারা লিব্নাতে গিয়ে সেই শহর আক্রমণ করল| 30 প্রভু ইস্রায়েলীয়দের সেই শহর ও শহরের রাজাকে পরাজিত করতে দিলেন| সেই শহরের প্রত্যেকটা লোককে ইস্রায়েলীয়রা হত্যা করেছিল| কোন লোকই বেঁচে রইল না| আর লোকরা য়িরীহোর রাজার য়ে দশা করেছিল, সেই শহরের রাজারও সেই দশা করল| 31 তারপর ইস্রায়েলের লোকদের নিয়ে যিহোশূয় লিব্না ছেড়ে লাখীশের দিকে গেলেন| লিব্নার কাছে তাঁবু খাটিযে তারা শহর আক্রমণ করল| 32 প্রভু তাদের লাখীশ জয় করতে দিলেন| দ্বিতীয দিনে তারা শহর অধিকার করল| ইস্রায়েলের লোকরা শহরের প্রত্যেকটা লোককে হত্যা করল| লিব্নার মতো এখানেও তারা একই কাজ করেছিল| 33 গেষরের রাজা হোরম লাখীশকে রক্ষার জন্য এসেছিল| কিন্তু যিহোশূয় তাকেও সৈন্যসামন্ত সমেত হারিযে দিলেন| তাদের একজনও বেঁচে রইল না| 34 তারপর যিহোশূয় ইস্রায়েলবাসীদের নিয়ে লাখীশ থেকে ইগ্লোনের দিকে যাত্রা করলেন| ইগ্লোনের কাছে তাঁবু গেড়ে তারা ইগ্লোন আক্রমণ করল| 35 সেদিন তারা শহর দখল করে সেখানকার সব লোককে মেরে ফেলল| ঠিক লাখীশের মতো এখানেও সেই একই ঘটনা ঘটল| 36 তারপর যিহোশূয় ইস্রায়েলবাসীদের নিয়ে ইগ্লোন থেকে হিব্রোণের দিকে চললেন| সকলে হিব্রোণ আক্রমণ করল| 37 এই শহরটা ছাড়াও হিব্রোণের লাগোযা কয়েকটা ছোটখাটো শহরও তারা অধিকার করল| শহরের প্রত্যেকটা লোককে তারা হত্যা করল| কেউ সেখানে বেঁচে রইল না| ইগ্লোনের মতো এখানেও সেই একই ঘটনা ঘটল| তারা শহর ধ্বংস করে সেখানকার সব লোককে হত্যা করেছিল| 38 তারপর যিহোশূয় ও ইস্রায়েলবাসীরা দবীরে ফিরে এসে সেই শহরটি আক্রমণ করল| 39 তারা সেই শহর, শহরের রাজা আর দবীরের লাগোযা সমস্ত ছোটখাটো শহর সব কিছু দখল করে নিল| শহরের সব লোককে তারা হত্যা করল| কেউ বেঁচে রইল না| হিব্রোণ আর তার রাজাকে নিয়ে তারা যা করেছিল দবীর ও তার রাজাকে নিয়েও তারা সেই একই কাণ্ড করল| লিব্না ও সে শহরের রাজার ব্যাপারেও তারা একই কাজ করেছিল| 40 এই ভাবে যিহোশূয় পাহাড়ী দেশ নেগেভের এবং পশ্চিম ও পূর্ব পাহাড়তলীর সমস্ত শহরের সব রাজাদের পরাজিত করল| ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর যিহোশূয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন সমস্ত লোককে হত্যা করার জন্য| তাই যিহোশূয় ঐ সব অঞ্চলের কোনো লোককেই বাঁচতে দেন নি| 41 যিহোশূয় কাদেশ-বর্ণেয় থেকে ঘসা পর্য়ন্ত সমস্ত শহর অধিকার করেছিলেন| মিশরের গোশন থেকে গিবিয়োন পর্য়ন্ত সমস্ত শহর তিনি অধিকার করেছিলেন| 42 একবারের অভিযানেই যিহোশূয় ঐসব শহর ও তাদের রাজাদের অধিকার করতে পেরেছিলেন| যিহোশূয় এমনটি করতে পেরেছিলেন কারণ ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর বয়ং ইস্রায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন| 43 এরপর যিহোশূয় ইস্রায়েলবাসীদের নিয়ে গিল্গলে তাদের শিবিরে ফিরে এলেন|
1 হাত্সোরের রাজা যাবীন এই সব ঘটনা শুনল| সে কয়েকজন রাজার সৈন্যসামন্তদের একসঙ্গে জড়ো করার কথা চিন্তা করল| মাদোনের রাজা য়োবব, অক্ষফের রাজা শিম্রোণের রাজার কাছে এবং 2 উত্তরাঞ্চলের সমস্ত রাজা, পাহাড় ও মরু অঞ্চলের সমস্ত রাজাকে যাবীন খবর পাঠাল| যাবীন কিন্নেরত, নেগেভ, পশ্চিম পাহাড়, পশ্চিমের নাপথ দোরের রাজাদের কাছে খবর পাঠাল| 3 যাবীন পূর্ব আর পশ্চিমের কনান সম্প্রদাযের রাজাদের কাছে খবর পাঠাল| সে ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয় এবং পাহাড়ী দেশের য়িবুষীযদের কাছেও খবর পাঠাল| সে মিস্পার কাছে হর্মোণ পর্বতের নীচে য়ে হিব্বীয়রা থাকে তাদের কাছেও খবর পাঠাল| 4 এই সব রাজার সৈন্যরা জড়ো হল| অসংখ্য য়োদ্ধা, অসংখ্য ঘোড়া আর অসংখ্য রথ মিলে তৈরী হল এক বিশাল বাহিনী| এত লোক সেখানে জড়ো হয়েছিল য়ে মনে হল তারা য়েন সমুদ্রের ধারের বালির দানার মতো অগনিত| 5 মেরোমের ছোট নদীর ধারে এই সমস্ত রাজা জড়ো হল| তারা তাদের সৈন্যবাহিনীকে একই শিবিরের মধ্যে সমবেত করল| আর কি ভাবে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যায় তার পরিকল্পনা করল| 6 তখন প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “এত সৈন্য দেখে ভয় পেও না| আমি তোমাদের জিতিযে দেব| আগামীকাল এই সময়ের মধ্যে তোমরা তাদের সকলকে মেরে ফেলবে| সমস্ত ঘোড়ার পাযের শিরা কিটে ফেলবে, তাদের সমস্ত রথ পুড়িয়ে দেবে|” 7 যিহোশূয় এবং তার সমস্ত সৈন্য হঠাত্ শত্রুদের আক্রমণ করল| মেরোম নদীর কাছে তারা শত্রুদের আক্রমণ করল| 8 প্রভু ইস্রায়েলীয়দের জিতিযে দিলেন| ইস্রায়েল সৈন্যবাহিনী তাদের পরাজিত করে তাড়িয়ে নিয়ে গেল বৃহত্তর সীদোন, মিষ্রফোত্-মযিম আর পূর্বের মিস্পীর উপত্যকার দিকে| সবকটি শত্রুকে মেরে না ফেলা পর্য়ন্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা থামল না| 9 প্রভু যা বলেছিলেন যিহোশূয় তাই করলেন| ঘোড়াগুলোর পাযের শিরা কেটে ফেললেন এবং রথগুলো পুড়িয়ে দিলেন| 10 তারপর যিহোশূয় ফিরে গিয়ে হাত্সোর শহর দখল করলেন| এবং হাত্সোরের রাজাকে হত্যা করলেন| (ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে য়েসব রাজ্য়গুলি ছিল তাদের মধ্যে হাত্সোরই ছিল সর্বপ্রধান|) 11 ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনী সেই শহরের প্রত্যেককে হত্যা করল| তারা সমস্ত লোককে একেবারে শেষ করে দিল| এক জন লোকও বেঁচে রইল না| তারপর তারা শহরটা বালিয়ে দিল| 12 যিহোশূয় এই সব শহরের সবকটি দখল করেছিলেন| তিনি শহরের সমস্ত রাজাকে হত্যা করেছিলেন| শহরের সমস্ত কিছুকে তিনি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন| প্রভুর দাস মোশি য়েমন আজ্ঞা করেছিলেন সেই মতো তিনি এই কাজ করেছিলেন| 13 কিন্তু ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনী পাহাড়ের ওপরে স্থাপিত কোন শহর বালিয়ে দেয় নি| হাত্সোরই ছিল একমাত্র শহর য়েটি পাহাড়ের ওপরে নির্মিত ছিল এবং য়িহোশূয়ের আদেশে য়েটি তারা পুড়িয়ে দিয়েছিল| 14 শহরগুলো থেকে পাওয়া সমস্ত জিনিসপত্র ইস্রায়েলবাসীরা নিজেদের জন্য রেখে দিয়েছিল| শহরের সমস্ত জীবজন্তুকে তারা রেখে দিয়েছিল, যদিও সেখানকার সমস্ত লোককেই তারা মেরে ফেলেছিল| কোন লোককেই তারা বাঁচতে দেয় নি| 15 বহুকাল আগে প্রভু তাঁর দাস মোশিকে এই কাজ করবার জন্য আজ্ঞা করেছিলেন| তারপর মোশি এই কাজ করার জন্য যিহোশূয়কে আজ্ঞা করেছিলেন, যিহোশূয় ঈশ্বরের আদেশ পালন করেছিলেন| প্রভু মোশিকে যা আজ্ঞা করেছিলেন যিহোশূয় তার সমস্তই পালন করেছিলেন| 16 এই ভাবে যিহোশূয় সমগ্র দেশের সমস্ত লোককে পরাজিত করেছিলেন| পাহাড়ি দেশ নেগেভ, সমগ্র গোশন অঞ্চল, পশ্চিমদিকের পাহাড়তলি, যর্দন উপত্যকা, ইস্রায়েলের সমস্ত পাহাড় পর্বত এবং সেগুলোর কাছাকাছি সমস্ত পাহাড় এই সবই তাঁর অধীনে এলো| 17 হালক পর্বতশৃঙ্গ থেকে সেযীরের কাছে লিবানোন উপত্যকার বাল্গাদ পর্য়ন্ত সমস্ত অঞ্চল যিহোশূয়র দখলে এল| লিবানোন উপত্যকাটি হার্মোণ পর্বতশৃঙ্গের নীচে অবস্থিত| সে দেশের সমস্ত রাজাকে তিনি পরাজিত ও নিহত করলেন| 18 বহু বছর ধরে এইসব রাজার বিরুদ্ধে যিহোশূয় যুদ্ধ করেছিলেন| 19 একমাত্র একটি শহরই ইস্রায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিল| সেটা হচ্ছে গিবিযোন শহর, যেখানে হিব্বীয় জাতির লোকরা বাস করে| অন্য সমস্ত শহর পরাজিত হয়েছিল| 20 প্রভু চেয়েছিলেন য়েন এসব দেশের লোকরা নিজেদের শক্তিশালী ভাবে| তাহলে তারা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে| এই ভাবেই য়েন তিনি তাদের প্রতি দযা না করে বিনাশ করেন| য়ে ভাবে প্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, সেই ভাবেই য়েন তিনি তাদের বিনাশ করেন| 21 অনাক বংশীয লোকরা হিব্রোণ, দবীর, অনাব এবং যিহূদা অঞ্চলের পাহাড়ি জায়গায় বাস করত| যিহোশূয় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের এবং তাদের শহরগুলোকে শেষ করে দিলেন| 22 ইস্রায়েল ভূখণ্ডে কোন অনাক বংশীয লোক বেঁচে রইল না| তারা শুধু বেঁচে রইল ঘসা, গাত এবং অস্দোদ অঞ্চলে| 23 যিহোশূয় সমগ্র ইস্রায়েল ভূখণ্ড নিজের আযত্ত্বাধীনে আনলেন, ঠিক য়ে ভাবে প্রভু বহুকাল বহুকাল আগে মোশিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন| প্রভু সেই দেশ তাঁর প্রতিশ্রুতি মত ইস্রায়েলীয়দের দান করেছিলেন| এই দেশ যিহোশূয় ইস্রায়েলের বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলেন| অবশেষে যুদ্ধ শেষ হল এবং দেশে শান্তি ফিরে এলো|
1 ইস্রায়েলবাসীরা যর্দন নদীর পূর্বদিকের সব দেশগুলি জয় করেছিল| অর্ণোন উপত্যকা থেকে হর্মোণ শৃঙ্গ পর্য়ন্ত সমস্ত ভূখণ্ড এবং যর্দন উপত্যকার পূর্ব দিকের সমস্ত ভূখণ্ড তারা জয় করেছিল| ইস্রায়েলবাসীরা য়ে সব রাজাদের পরাজিত করেছিল তার তালিকা এখানে দেওয়া হচ্ছে: 2 তারা ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে পরাজিত করেছিল য়ে হিষ্বোন শহরে থাকত| সীহোনের রাজ্য় ছিল অর্ণোন উপত্যকার অরোযের থেকে য়ব্বোক নদী পর্য়ন্ত বিস্তৃত| ঐ উপত্যকার মাঝখান থেকে তার রাজ্য়ের শুরু| সেটা ছিল অম্মোনীয় লোকেদের এলাকার সীমান্ত| গিলিয়দ দেশের অর্ধেকেরও বেশী অংশে সীহোন রাজত্ব করেছিল| 3 যর্দন উপত্যকার পূর্বতীরে গালীলী হ্রদ থেকে মৃত সাগর (লবণসাগর) পর্য়ন্ত বিস্তৃত রাজ্য় সে শাসন করত| এই রাজ্য়টি বাদে সে বৈত্-য়িশীমোত থেকে দক্ষিণ পিস্গা পাহাড় পর্য়ন্ত দেশগুলিও শাসন করত| 4 তারা বাশনের রাজা ওগকে পরাজিত করেছিল| ওগ ছিল রফায বংশের রাজা| সে রাজত্ব করত অষ্টারোত্ এবং ইদ্রিযী দেশে| 5 হর্মোণ পর্বতশৃঙ্গ, সল্খা এবং বাশনের সমস্ত অঞ্চল ওগ শাসন করত| যেখানে গশূর এবং মাখাত জাতির লোকরা বসবাস করত| সেটাই ছিল তার রাজ্য়ের সীমা| ওগ গিলিয়দ দেশের অর্ধেক অংশেও রাজত্ব করত| এই জায়গাটা শেষ হয়েছে হিষ্বোনের রাজা সীহোনের দেশে| 6 প্রভু ভৃত্য মোশি এবং ইস্রায়েলের এই সব রাজাকে পরাজিত করেছিলেন| মোশি রূবেণ পরিবারগোষ্ঠী, গাদ পরিবারগোষ্ঠী এবং মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেককে এই ভূখণ্ড দান করেছিলেন| মোশি এই দেশ তাদের স্বদেশ হিসাবেই দান করেছিলেন| 7 ইস্রায়েলের লোকরা যর্দন নদীর পশ্চিম কূলের দেশের রাজাদেরও জয় করেছিল| যিহোশূয় এই দেশের লোকদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| তিনি এটি জয় করেছিলেন এবং পরে এই ভুখণ্ডটি বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলেন| ঈশ্বর তাদের এই দেশ দান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| এই দেশ ছিল লিবানোনের বাল্গাদ উপত্যকা এবং সেযীরের কাছে হালক পর্বতশৃঙ্গের মাঝখানে| 8 পাহাড়ি অঞ্চল, পশ্চিমের পাহাড়তলি অঞ্চল, যর্দন উপত্যকা, পূর্বদিকের পাহাড়গুলি, মরুভূমি এবং নেগেভ অঞ্চলগুলি এর অন্তর্ভুক্ত| এখানে হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরীষীয, হিব্বীয় এবং য়িবুষ বংশীয লোকরা বাস করত| ইস্রায়েলীয়দের দ্বারা পরাজিত রাজাদের তালিকাটি এইরকম: 9 য়িরীহোর রাজা 1বৈথেলের কাছে অযের রাজা 1 10 জেরুশালেমের রাজা 1হিব্রোণের রাজা 1 11 য়র্মুতের রাজা 1লাখীশের রাজা 1 12 ইগ্লোনের রাজা 1গেসরের রাজা 1 13 দবীরের রাজা 1গেদরের রাজা 1 14 হর্মার রাজা 1অরাদের রাজা 1 15 হর্মার রাজা 1অরাদের রাজা 1 16 মক্কেদার রাজা 1বৈথেলের রাজা 1 17 তপূহের রাজা 1হেফরের রাজা 1 18 অফেকের রাজা 1লশারোণের রাজা 1 19 মাদোনের রাজা 1হাত্সোরের রাজা 1 20 শিম্রোণ-মরোণের রাজা 1অক্ষফের রাজা 1 21 তানকের রাজা 1মগিদ্দোর রাজা 1 22 কেদশের রাজা 1কর্ম্মিলস্থ য়ক্লিযামের রাজা 1 23 দোর পর্বতশৃঙ্গের দোরের রাজা 1গিল্গলের গোযীমের রাজা 1 24 তির্সার রাজা 1মোট রাজার সংখ্যা 31
1 যিহোশূয় যখন বেশ বৃদ্ধ হয়ে গেছেন তখন প্রভু তাকে বললেন, “যিহোশূয় যদিও তোমার বেশ বযস হয়েছে, কিন্তু এখনও অধিকার করার জন্য অনেক দেশ রয়েছে| 2 তুমি এখনও গশূর রাজ্য় অথবা পলেষ্টীয়দের রাজ্য় জয় করো নি| 3 মিশরের সীহোর নদী থেকে উত্তরে ইক্রোণ সীমান্ত পর্য়ন্ত অঞ্চল তুমি এখনও অধিকার করো নি| জায়গাটা এখন কনানীয়দেরই থেকে গেছে| তোমাকে এখনও ঘসা, অস্দোদ, অস্কিলোন, গাত এবং ইক্রোণের পাঁচজন পলেষ্টীয় নেতাকে পরাজিত করতে হবে| 4 এখনও তোমাকে কনানদের দেশের দক্ষিণে অব্বীযর লোকদের পরাজিত করতে হবে| তোমাকে মিযারা পরাজিত করতে হবে, য়েটা অফেক পর্য়ন্ত সীদোনীযদের অধিকৃত, য়েটি ইমোরীয়দের সীমানা| 5 তুমি গিব্লী সম্প্রদাযের দেশটাও এখনও দখল করতে পারো নি| তাছাড়াও বাল্গাদের পূর্বদিকে লিবানোন| জায়গাটা হর্মোণ পর্বতশৃঙ্গ পাদদেশ থেকে লেবো হমাথ পর্য়ন্ত বিস্তৃত| 6 “সীদোনের লোকরা লিবানোন থেকে মিষ্রফোত্-মযিম পর্য়ন্ত বিস্তৃত পাহাড়ি দেশে বাস করে| কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের স্বার্থে ঐসব দেশের সমস্ত লোককে আমি বের করে দেব| এই দেশের কথা অবশ্যই মনে রাখবে ইস্রায়েলীয়দের কাছে দেশ ভাগ করে দেবার সময় যা বললাম সে রকম করবে| 7 নটি পরিবারগোষ্ঠী এবং মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকের মধ্যে দেশটা ভাগ করবে|” 8 ইতিমধ্যেই রূবেণ, গাদ, বাকী অর্ধেক মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর লোক তাদের জমি-জায়গা দখল করেছে| প্রভুর দাস মোশি যর্দন নদীর পূর্ব দিকের দেশ তাদের দিয়ে গেছেন| অর্ণোন উপত্যকার ধারে অরোযের থেকে শুরু হয়েছে তাদের দেশ আর তা উপত্যকার মাঝখানের শহর পর্য়ন্ত বিস্তৃত| তাছাড়া এই দেশের মধ্যে আছে মেদবা থেকে দীবোন পর্য়ন্ত সমস্ত সমতল ভূমিও| 9 10 ইমোরীয় রাজা সীহোন য়েসব শহরের শাসনকর্তা সেসব শহর ঐ দেশেরই মধ্যে রয়েছে| সীহোন শাসন করত হিষ্বোন শহর| সেই ভূখণ্ডটি যেখানে ইমোরীয়রা বাস করত সেই এলাকা পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল| 11 গিলিয়দ শহরটা সে দেশের মধ্যে পড়ে| তাছাড়া গশূর এবং মাখাথ অঞ্চলের লোকরা যেখানে থাকত সেটাও এই দেশের অন্তর্গত| এবং পুরো হর্মোণ পর্বতশৃঙ্গ ও সল্খা পর্য়ন্ত বিস্তৃত পূরো বাশন ঐ দেশের অন্তর্গত ছিল| 12 রাজা ওগের সমস্ত রাজ্য়ই সে দেশের অন্তর্গত| ওগ শাসন করত বাশন| একসময় সে শাসন করত অষ্টারোত্ এবং ইদ্রিযী| সে ছিল রফায সম্প্রদাযের লোক| অতীতে মোশি ঐ সম্প্রদাযের লোকদের হারিযে তাদের দেশ দখল করেছিলেন| 13 ইস্রায়েলীয়রা গশূর এবং মাখাথ অঞ্চলের লোকদের তাড়িয়ে দেয় নি| তারা আজও ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে বসবাস করছে| 14 এক মাত্র লেবি পরিবারগোষ্ঠীই কোনো জমি জায়গা পায় নি| তার বদলে তারা প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বরের কাছে য়ে সমস্ত পশু আগুনে দেওয়া হয়েছিল সেগুলি পেত| প্রভু তাদের কাছে এই রকম প্রতিশ্রুতিই করেছিলেন| 15 মোশি রূবেণ বংশের প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীকে কিছু জমি জায়গা দিয়েছিলেন| তারা এই সব জায়গা পেয়েছিল; 16 অর্ণোন উপত্যকার কাছে অরোযের থেকে মেদবা শহর পর্য়ন্ত| এর মধ্যে আছে সমস্ত সমতলভূমি ও উপত্যকার মাঝখানের শহর| 17 হিষ্বোন পর্য়ন্ত্ বিস্তৃত এম্প দেশে রয়েছে সমতলের সমস্ত শহর| শহরগুলি হচ্ছে দীবোন, বামোত্-বাল, বৈত্-বাল্-মিযোন, 18 য়হস, কদেমোত্, মেফাত্, 19 কিরিযাথযিম, সিব্মা, সেরত্ শহর পাহাড়ের উপরিস্থিত উপত্যকায| 20 বৈত্-পিযোর, পিস্গা পাহাড় এবং বৈত্-য়িশীমোত্, 21 ইমোরীয়দের রাজা সীহোন এই সমস্ত অঞ্চলগুলিতে এবং সমতল ভূমির শহরগুলিতে রাজত্ব করত| সীহোন হিষ্বোন শহর শাসন করত| কিন্তু মোশি তাকে এবং মিদিয়নীয়দের নেতাদের পরাজিত করেছিলেন| নেতাদের নামগুলো হচ্ছে ইবি, রেকম, সুর, হূর এবং রেবা| (এরা সকলেই সীহোনের সঙ্গে য়োগ দিয়ে যুদ্ধ করেছিল|) ঐসব অঞ্চলেই এরা থাকত| 22 ইস্রায়েলীয়রা বিযোরের পুত্র বিলিযমকেও পরাজিত করেছিল| (বিলিযম যাদুবিদযায ভবিষ্যত্ বলে দিতে পারত|) ইস্রায়েলীয়রা যুদ্ধের সময় বহুলোককে হত্যা করেছিল| 23 রূবেণকে য়ে জায়গা দেওয়া হয়েছিল তার শেষ হয়েছে যর্দন নদীর তীরে| রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর সকলকে য়ে জায়গা দেওয়া হয়েছিল সেগুলো হচ্ছে তালিকাভুক্ত এই সব শহর আর মাঠঘাট| 24 এই সেই জায়গা য়েটি মোশি দিয়েছিলেন গাদ পরিবারগোষ্ঠীকে| তিনি প্রতি পরিবারগোষ্ঠীকে এই জমি-জায়গা দিয়েছিলেন: 25 যাসের এবং গিলিয়দের সমস্ত শহর| মোশি তাদের অম্মোনীয় মানুষদের অর্ধেক জমিও দিয়ে দিয়েছিলেন, য়ে অঞ্চলটি এইসব রব্বার কাছে অরোযের পর্য়ন্ত বিস্তৃত| 26 এই অঞ্চলের মধ্যে আছে হিষ্বোন থেকে রামত্-মিস্পী এবং বটোনীম, মহনযিম থেকে দবীর এবং 27 বৈত্-হারম, বৈত্-নিম্রা, সুক্কোত্ ও সাফোন| হিষ্বোনের রাজা সীহোন অন্য য়েসব অঞ্চল শাসন করতেন সেগুলি এদেশের মধ্যে| এই রাজ্যের সীমানা গালীল হ্রদের শেষ পর্য়ন্ত ছিল| 28 এই সব জমিজায়গা মোশি দিয়ে গিয়েছিলেন গাদ পরিবারগোষ্ঠীকে| তালিকভুক্ত সমস্ত শহর এই দেশের মধ্যে আছে| মোশি প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠীকে এই দেশ দান করেছিলেন| 29 মনঃশির অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠীকে মোসি এই দেশ দিয়ে গিয়েছেন| মনঃশির অর্ধেক পরিবার এই দেশ পেয়েছিল| সে দেশের পরিচয এইরকম: 30 দেশ শুরু হয়েছে মহনযিম থেকে| এর মধ্যে আছে সমস্ত বাশন যার শাসনকর্তা রাজা ওগ| বাশনের অন্তর্গত যাযীরের সমস্ত শহর| (মোট 60 টি শহর) 31 এ দেশের মধ্যে আছে গিলিয়দের অর্ধেকটা, অষ্টারোত্ এবং ইদ্রিযী| (গিলিয়দ, অষ্টারোত্ আর ইদ্রিযী শহরে রাজা ওগ বাস করত|) এই সব জায়গা দেওয়া হয়েছিল মনঃশির পুত্র মাখীরের পরিবারকে| সেই পরিবারের অর্ধেক লোক এই জায়গা পেয়েছিল| 32 এই সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে মোশি এই জমি দিয়েছিলেন| যখন মোয়াব সমতলে লোকরা তাঁবু গেড়েছিল তখন মোশি এই জমিটি দান করেছিলেন| জায়গাটা হচ্ছে য়িরীহোর পূর্বে যর্দন নদীর পারে| 33 লেবি পরিবারগোষ্ঠীকে মোশি কোন জমি জায়গা দেন নি| ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর কথা দিয়েছিলেন লেবি পরিবারগোষ্ঠীর জন্য তিনি নিজেই হবেন তাদের অধিকার|
1 যাজক ইলীয়াসর, নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানরা লোকদের মধ্যে জমিটি ভাগ করে দিল| 2 বহুকাল আগে প্রভু মোশিকে কি ভাবে তাঁর ইচ্ছেমতো লোকরা নিজেদের জমি জায়গা বেছে নেবে সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন| সাড়ে নটি পরিবারগোষ্ঠীর লোক ঘুঁটি চেলেজমি পেয়েছিল| 3 মোশি ইতিমধ্যেই আড়াইটি পরিবারগোষ্ঠীকে যর্দন নদীর পূর্বতীরের জমি দান করেছিলেন| কিন্তু অন্যান্যদের মতো লেবি পরিবারগোষ্ঠী কোনো জমি জায়গা পায় নি| 4 বারোটি পরিবারগোষ্ঠীকে জমিজায়গা দেওয়া হয়েছিল| য়োষেফের পুত্ররা মনঃশি ও ইফ্রয়িম এই দুটি পরিবারগোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে গিয়েছিল| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীই কিছু জমি জায়গা পেয়েছিল| কিন্তু লেবি পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা কোন জমিজায়গা পায়নি| তারা বসবাসের জন্য মাত্র কয়েকটি শহর পেয়েছিল| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর জমি-জায়গার মধ্যেই এই সব শহরগুলি ছিল| পশুদের জন্য তারা মাঠও পেয়েছিল| 5 ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে কি করে জমি ভাগ বাঁটোযারা করে দিতে হবে প্রভু মোশিকে তা বলে দিয়েছিলেন| প্রভু য়েমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই ভাবেই ইস্রায়েলবাসীরা জমি ভাগ করে নিয়েছিল| 6 একদিন যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর কয়েকজন লোক গিল্গলে গিয়েছিল য়িহোশূয়ের সঙ্গে দেখা করতে| এদের মধ্যে একজনের নাম কালেব| সে হচ্ছে কনিসীয য়িফুন্নির পুত্র| কালেব যিহোশূয়কে বলল, “আপনার মনে আছে প্রভু কাদেশ বর্ণেয়তে কি কি বলেছিলেন? প্রভু তাঁর দাস মোশিকে আমার এবং আপনার সম্বন্ধে বলেছিলেন| 7 প্রভুর দাস মোশি আমরা য়ে দেশে যাচ্ছিলাম সেটা দেখবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছিলেন| তখন আমার বযস ছিল 40| ফিরে এসে জায়গাটা সম্বন্ধে আমার মনোভাব আমি মোশিকে বলেছিলাম| 8 আমার সঙ্গীরা লোকদের এমন সব কথা বলল য়ে তারা ভয় পেয়ে গেল| কিন্তু আমি সত্য়িই বিশ্বাস করতাম য়ে প্রভু আমাদের সেই দেশ নেবার অনুমতি দেবেন| 9 তাই মোশি আমার কাছে সেদিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| মোশি বললেন, ‘য়ে দেশে তোমরা গুপ্তচরবৃত্তি করতে গিয়েছিলে সে দেশ তোমাদেরই হবে| তোমার উত্তরপুরুষরা চিরকাল সে দেশ ভোগ করবে| আমি তোমাদের সে দেশ দেব, কারণ তুমি সত্য়িই আমার প্রভু ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেছিলে|’ 10 “এখন প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে আমাকে 45 বছর বাঁচিয়ে রেখেছেন| এতদিন আমরা সকলে মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম| এখন আমার বযস 85 বছর| 11 আজও আমি সেদিনের মতোই শক্ত সমর্থ য়েদিন মোশি আমাকে বাইরে পাঠিয়েছিলেন| সেই দিনের মতো আজও আমি যুদ্ধের জন্য তৈরী আছি| 12 তাই বলছি বহুকাল আগে প্রভু যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই অনুসারে পাহাড়ী দেশটা আমাকে দিন| আপনি জানতেন তখন সেখানে শক্তিশালী অনাক বংশীয লোকরা বসবাস করত| শহরগুলো ছিল বেশ বড় আর সুরক্ষিত| কিন্তু এখন প্রভু আমার সহায় এবং প্রভুর কথামতো সেই দেশের ভার আমি নেব|” 13 য়িফুন্নির পুত্র কালেবকে যিহোশূয় আশীর্বাদ করলেন| তিনি তাকে দিলেন হিব্রোণ শহর| 14 সেই শহরে আজও কনিস বংশীয য়িফূন্নির পুত্র কালেবের পরিবারের লোকরা বাস করছে| সেই শহর আজও তার বংশধরদের জন্যে থেকে গেছে, কারণ সে ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরকে বিশ্বাস করত| 15 আগে সেই শহরটার নাম ছিল কিরিযত্-অর্ব| অনাক বংশীয লোকেদের মধ্যে দানবীয চেহারার বৃহত্তম মানুষ অর্বর নামেই সেই শহরের নাম রাখা হয়েছিল| এরপর সে দেশে শান্তি বিরাজ করল|
1 যিহূদাকে য়ে দেশ দেওয়া হয়েছিল তা তার পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হল| দেশটি বিস্তৃত ছিল একদিকে ইদোমের সীমানা পর্য়ন্ত এবং অন্যদিকে দক্ষিণে তিম্নার ধার দিয়ে সিন মরুভূমি পর্য়ন্ত| 2 যিহূদা দেশের দক্ষিণের সীমা লবণ সাগরের দক্ষিণ দিক থেকে শুরু| 3 সেই সীমা দক্ষিণে অক্রব্বীম গিরিপথ হয়ে সিন পর্য়ন্ত গেছে| তারপর আবার দক্ষিণে কাদেশ-বর্ণেয় পর্য়ন্ত| এই সীমা হিষ্রোণ থেকে অদ্দর পর্য়ন্ত দেশ ছাড়িযে ঘুরে গিয়ে কর্ক্কা পর্য়ন্ত গেছে| 4 মিশরের নদী অসমোন এবং ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত এই সীমা প্রসারিত| ঐ সমস্ত ভূমি তাদের দক্ষিণ সীমানার ওপর ছিল| 5 তাদের পূর্বদিকে সীমানা ছিল লবণ নদীর তীর থেকে সেখান পর্য়ন্ত যেখানে যর্দন নদী সাগরে মিশেছে|উত্তরের সীমানা শুরু হয়েছে যেখানে যর্দন নদী মৃত সাগরে মিশেছে| 6 তারপর উত্তরের সীমা বৈত্-হগ্লা হয়ে বৈত্-অরাবা পর্য়ন্ত গেছে| সীমা আরও গেছে বোহনের পাথরের দিকে| (বোহন হচ্ছে রূবেণের পুত্র|) 7 উত্তরের সীমা আখোর উপত্যকা হয়ে দবীর পর্য়ন্ত গেছে| তারপর উত্তরে বাঁক নিয়ে গিল্গল পর্য়ন্ত গেছে| গিল্গল হচ্ছে সেই রাস্তার ওপারে য়ে রাস্তাটি অদুম্মীম পর্বতের মাঝখান দিয়ে গেছে| সেটা নদীর দক্ষিণে| ঐন্-শেমশ নদী পর্য়ন্ত সীমানা প্রসারিত| সীমার শেষ হচ্ছে ঐন্-রোগেলে| 8 তারপর সেই সীমানা আরো এগিয়ে গেছে য়িবুষদের শহরের দক্ষিণ ঘেঁষে বেন হিন্নোম উপত্যকা পর্য়ন্ত| (ঐ শহরটি জেরুশালেম নামে পরিচিত ছিল|) সেখানে সীমানা গেছে হিন্নোম উপত্যকার পশ্চিমে পাহাড়ের চূড়া পর্য়ন্ত| সেটা রফাযীম উপত্যকার উত্তর দিকে| 9 সেখান থেকে সীমানা আবার গেছে নিপ্তোহের ঝর্ণা পর্য়ন্ত| তারপর ইফ্রোণ পাহাড় চূড়ার কাছাকাছি শহরগুলো পর্য়ন্ত| সেখান থেকে ওটা বাঁক নিয়েছে এবং বালায গেছে| (বালার অপর নাম কিরিযত্ য়িযারীম) 10 বালা থেকে সীমা পশ্চিমে বাঁক নিয়ে পাহাড়ী দেশ সেযীর পর্য়ন্ত গেছে| তারপর য়িযারীম পাহাড় চূড়ার উত্তর দিক ঘেঁষে নীচে বৈত্-শেমশে পর্য়ন্ত| সেখান থেকে সেটি তিম্নার পাশ দিয়ে গেছে| 11 তারপর ইক্রোণের উত্তর দিকের পাহাড়| পাহাড় থেকে শিক্করোণ আর বালা পর্বতের পাশ দিয়ে যব্নিযেল হয়ে ভূমধ্যসাগরে শেষ হয়েছে| 12 ভূমধ্যসাগর যিহূদার দেশের পশ্চিম দিকে এই চৌহদ্দির মধ্যেই যিহূদার দেশ| যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী এই অঞ্চলে বসবাস করত| 13 প্রভু যিহোশূয়কে বলেছিলেন, য়িফুন্নির পুত্র কালেবকে যিহূদার দেশের একটা অংশ য়েন তিনি দিয়ে দেন| তাই যিহোশূয় ঈশ্বরের আদেশমত তাকে সেই জায়গা দিয়ে দিলেন| যিহোশূয় তাকে কিরিযত্-অর্ব (হিব্রোণ) শহর দান করলেন| (অর্ব হচ্ছে অনাকের পিতা|) 14 হিব্রোণে বসবাসকারী তিনটি অনাক পরিবারকে কালেব তাড়িয়ে দিলেন| ঐ তিনটি পরিবার হচ্ছে শেশয, অহীমান আর তল্ময| এরা সবাই অনাকীয় লোক| 15 তারপর কালেব দবীরে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল| (আগে দবীরকে কিরিযত্-সেফরও বলা হত|) 16 কালেব বলল, “আমি কিরিযত্-সেফর আক্রমণ করতে চাই| আমি আমার কন্যা অক্ষার বিয়ে তারই সঙ্গে দেব য়ে যুদ্ধে জয়লাভ করে আসবে|” 17 কালেবের ভাই কনষের পুত্র অত্নীয়েল শহর জয় করল| কালেব অত্নীয়েলের সঙ্গে কন্যা অক্ষার বিয়ে দিলেন| 18 অক্ষা অত্নীয়েলের সঙ্গে ঘর করতে লাগল| অত্নীয়েল অক্ষাকে বলল তার পিতা কালেবের কাছ থেকে আরও কিছু জায়গা চাইতে| অক্ষা পিতার কাছে গেল| গাধার পিঠ থেকে নেমে সে পিতার কাছে গেলে কালেব জিজ্ঞাসা করল, “তোমার কি চাই?” 19 অক্ষা বলল, “আমাকে আশীর্বাদ করো| তুমি আমাকে নেগেভের শুকনো মরুভূমি দিয়েছ| দযা করে এমন কিছু জায়গা দাও যেখানে জল পাওয়া যায়|” সেই মতো কালেব সেরকম জায়গাই অর্থাত্ সেই দেশের উপর ও নীচের দিকের জলাভূমিগুলি মেয়েকে দিল| 20 প্রভু য়েমন কথা দিয়েছিলেন সেই মতো যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী জমি-জায়গা পেয়েছিল| 21 এই শহরগুলি হচ্ছে যিহূদার সেই অংশে যেখানে যিহূদার দক্ষিণের সীমা বরাবর এদোমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে| সেগুলো হচ্ছে: কব্সেল, এদর, যাগুর, 22 কীনা, দীমোনা, অদাদা, 23 কেদশ, হাত্সোর, য়িত্নন, 24 সীফ, টেলম, বালোত্, 25 হাত্সোর, হদত্তা, কিরিযোত্ হিষ্রোণ (হাত্সোর), 26 অমাম, শমা, মোলদা, 27 হত্সর-গদ্দা, হিষ্মোন, বৈত্-পেলট, 28 হত্সয-শূযাল, বের্-শেবা, বিষিযোথিযা, 29 বালা, ইযীম, এত্সম, 30 ইল্তোলদ, কসীল, হর্মা, 31 সিক্লগ, মদ্মন্না, সন্সন্না, 32 লবাযোত্, শিল্হীম, ঐন এবং রিম্মোণ| মোট 29টি শহর এবং সেখানকার সব মাঠঘাট| 33 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীরা পশ্চিমের পাহাড়ী অঞ্চলের শহরগুলি পেয়েছিল| ইষ্টাযোল, সরা, অশ্না, 34 সানোহ, ঐন্-গন্নীম, তপূহ, ঐনম, 35 য়র্মুত্, অদুল্লম, সোখো, অসেকা, 36 শারযিম, অদীথযিম এবং গদেরা (গদেরোথযিম)| মোট 14টি শহর এবং সেখানকার সব মাঠঘাট| 37 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী আবার এই সব শহরও পেয়েছিল: সনান, হদাশা, মিগ্দল-গাদ, 38 দিলিযন, মিস্পী, য়ক্তেল, 39 লাখীশ, বস্কত্, ইগ্লোন, 40 কব্বোন, লহমম, কিত্লীশ, 41 গদেরোত্, বৈত্-দাগোন, নয়মা এবং মক্কেদা| মোট 16টি শহর আর তার চারপাশের মাঠঘাট| 42 যিহূদার লোকরা এই সব শহরও পেয়েছিল: লিব্না, এথর, আশন, 43 য়িপ্তহ, অশ্না, নত্সীব, 44 কিযিলা, অক্ষীব এবং মারেশা| মোট 9টি শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠঘাট| 45 যিহূদার লোকরা ইক্রোণ এবং অন্যান্য ছোটখাট শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠঘাটও পেয়েছিল| 46 তারা ইক্রোণের পশ্চিমদিকের জায়গা এবং অস্দোদের কাছাকাছি শহর আর মাঠঘাটও পেয়েছিল| 47 অস্দোদের চারদিকের সমস্ত জায়গা এবং ছোটখাট শহরগুলো যিহূদার অন্তর্গত ছিল| যিহূদার অধিবাসীরা ঘসার চারপাশের জায়গা, মাঠ ও কাছাকাছি সমস্ত শহরও পেয়েছিল| তাদের দেশ মিশরের নদী এবং ভূমধ্যসাগরের উপকূল পর্য়ন্ত ছড়ানো| 48 পাহাড়ি দেশের শহরগুলোও যিহূদার অধিবাসীরা পেয়েছিল, শহরগুলো হচ্ছে: শামীর, য়ত্তীর সোখো, 49 দন্না, কিরিযত্-সন্না (দবীর), 50 অনাব, ইষ্টিমোয, আনীম, 51 গোশন, হোলোন এবং গীলো| মোট 11টি শহর ও তাদের চারিদিকের মাঠঘাট| 52 যিহূদার বাসিন্দারা এই সব শহরও পেয়েছিল: অরাব, দূমা, ইশিযন, 53 যানীম, বৈত্-তপূহ, অফেকা 54 হুমটা, কিরিযত্-অর্ব (হিব্রোণ) এবং সীযোর| 9টি শহর এবং চারপাশের মাঠসমূহ| 55 যিহূদার লোকরা এই সব শহরও পেয়েছিল: মাযোন, কর্মিল, সীফ, যুটা 56 য়িষ্রিযেল, য়ক্দিযাম, সানোহ্, 57 কযিন, গিবিয়া এবং তিম্না| মোট 10টি শহর এবং তাদের চারিদিকের মাঠগুলি| 58 যিহূদার অধিবাসীরা এই শহরগুলোও পেয়েছিল: হলহূল, বৈত্-সূর, গদোর, 59 মারত্, বৈত্-অনোত্ এবং ইল্তকোন, মোট 6টি শহর এবং তাদের চারিদিকের মাঠগুলো| 60 যিহূদার লোকদের রব্বা এবং কিরিযত্-বাল (কিরিযত্-য়িযারীম) এই শহর দুটি দেওয়া হয়েছিল| 61 মরুভূমির শহরগুলোও যিহূদার বাসিন্দারা পেয়েছিল| সেগুলো হচ্ছে: বৈত্-অরাবা, মিদ্দীন, সকাখা, 62 নিব্শন, লবন শহর এবং ঐন্-গদী| মোট 6টি শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠগুলো| 63 যিহূদার সৈন্যবাহিনী জেরুশালেমে বসবাসকারী য়িবূষ লোকদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয় নি| তাই আজ জেরুশালেমে যিহূদাবাসীদের সঙ্গে য়িবূষরাও বাস করছে|
1 য়োষেফ পরিবার য়ে দেশ পেয়েছিল তা শুরু হয়েছে য়িরীহোর কাছে যর্দন নদী থেকে আর য়িরীহোর পূর্ব দিকের নদী পর্য়ন্ত চলে গেছে| য়িরীহো থেকে বৈথেলের পাহাড়ী দেশ পর্য়ন্ত এদেশের সীমানা প্রসারিত| 2 তারপর সীমানা গেছে বৈথেল (লূস) থেকে অটারোতে অর্কীযদের সীমা পর্য়ন্ত| 3 তারপর সীমানা গেছে পশ্চিমে য়ফ্লেট বংশীয লোকদের সীমা পর্য়ন্ত| তারপর নিম্ন বৈত্-হোরোণ, গেষর হয়ে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত| 4 মনঃশি এবং ইফ্রয়িমের লোকরা জমি-জায়গা পেয়েছিল| (মনঃশি আর ইফ্রয়িম হল য়োষেফের পুত্র|) 5 সেই দেশের পূর্ব সীমা য়েটা ইফ্রয়িমের উত্তরপুরুষদের দেওয়া হয়েছিল সেটির শুরু অটারোত্-অদ্দর থেকে য়েটি ছিল উচ্চ বৈত্-হোরোণের কাছে পশ্চিম সীমানার শুরু মিক্মথাথ থেকে| 6 এই সীমানা পূর্বদিকে বাঁক নিয়েছে তানোত্-শীলোর দিকে এবং আরো পূর্ব দিকে এগিয়ে গেছে যানোহ পর্য়ন্ত| 7 তারপর নেমে গিয়ে যানোহ থেকে অটারোত্ এবং নারঃ পর্য়ন্ত| এই ভাবেই য়িরীহো পর্য়ন্ত সীমানা প্রসারিত হয়ে যর্দন নদীতে এসে থেমেছে| 8 সীমানাটি তপূহ থেকে পশ্চিমদিকে কানা নদীর দিকে গেছে এবং শেষ হয়েছে ভূমধ্যসাগরে| এই সমস্ত জায়গা ইফ্রয়িমের বংশধরদের দেওয়া হয়েছিল| সেই পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক পরিবার একটা করে অংশ পেয়েছিল| 9 ইফ্রয়িমের অধিকাংশ সীমান্ত শহরই আসতে মনঃশির সীমানায, কিন্তু ইফ্রয়িমের বংশধররা এই সব শহর এবং মাঠঘাট পেয়েছিল| 10 ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা গেষর শহর থেকে কনান বংশীয লোকদের তাড়িয়ে দিতে পারে নি| তাই ইফ্রয়িম বংশীয লোকদের সঙ্গেই তারা আজও বসবাস করছে| কিন্তু কনান বংশীযরা ইফ্রয়িমের ক্রীতদাস হয়েই থেকে গিয়েছিল|
1 তারপর মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীকে জমি-জায়গা দেওয়া হল| মনঃশি ছিলেন য়োষেফের প্রথম পুত্র| মনঃশির জ্য়েষ্ঠ পুত্র মাখীর গিলিয়দের পিতা| মাখীর ছিলেন মস্ত বড় য়োদ্ধা, তাই গিলিয়দ এবং বাশনের সমস্ত জায়গা মাখীর পরিবারকে দেওয়া হল| 2 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অন্যান্য পরিবারকেও জমি দান করা হয়েছিল| এই সব পরিবারের কর্তা হচ্ছে অবীযেষর, হেলক, অস্রীযেল, শেখম, হেফর এবং শমীদা| এরা সব মনঃশির অন্যান্য পুত্র আর মনঃশি হলেন য়োষেফের পুত্র| এদের পরিবারগুলি জমির ভাগ পেয়েছিল| 3 সল্ফাদ হচ্ছে হেফরের পুত্র| হেফরের পিতা গিলিয়দ| গিলিয়দের পিতা মাখীর আর মাখীরের পিতা হচ্ছে মনঃশি| সল্ফাদের কোন পুত্র ছিল না বটে, কিন্তু পাঁচটি কন্যা ছিল| তাদের নাম মহলা, নোযা, হগ্লা, মিল্কা আর তির্সা| 4 মেয়েরা সব গেল যাজক ইলিয়াসর, নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং অন্যান্য দলপতির কাছে| তারা বলল, “প্রভু মোশিকে বলেছিলেন, ভাইদের য়ে জমি দেওয়া হবে, মেয়েদেরও য়েন সে রকম জমি দেওয়া হয়|” সুতরাং ইলিয়াসর প্রভুর নির্দেশ পালন করলেন| তিনি মেয়েদেরও কিছু জমি-জায়গা দিলেন| তুলনায় মেয়েরাও তাদের কাকাদের মতোই জমি-জায়গা পেল|” 5 অতএব মনঃশির পরিবারগোষ্ঠী যর্দন নদীর পশ্চিমে দশটা জমি এবং যর্দন নদীর পূর্ব পারের আরো দুটো জায়গা গিলিয়দ এবং বাশন পেল| 6 সেইজন্য মনঃশি প়রিবারগোষ্ঠীর মেয়েরা ছেলেদের সমান জায়গা পেল| মনঃশি গোষ্ঠীর বাদবাকীদের দেওয়া হল গিলিয়দ| 7 মনঃশির জমি জায়গা আশের এবং মিক্মথত্ এর মাঝখানে| সেটা শিখিমের কাছেই| সীমানা সোজা চলে গেছে দক্ষিণে ঐন্-তপূহ অঞ্চলের দিক বরাবর| 8 9 তপূহকে ঘিরে সব জমি ছিল মনঃশির| কিন্তু খোদ তপূহ শহরটা কিন্তু তার নিজের ছিল না| তপূহ শহরটা মনঃশি এলাকার ধার ঘেঁষে| শহরটা ছিল ইফ্রয়িমের| 9মনঃশির সীমানা দক্ষিণে কান্না নদী পর্য়ন্ত গেছে| এই জায়গাটা মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর হলেও শহরগুলো কিন্তু ইফ্রয়িমের দখলে নদীর উত্তরদিকে ছিল মনঃশির সীমানা যা পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত প্রসারিত| 10 দক্ষিণ দিকের জমি জায়গা ছিল ইফ্রয়িমের| উত্তরদিকটা ছিল মনঃশির দখলে, পশ্চিম সীমা ভূমধ্যসাগর| এই সীমানা উত্তর দিকে আশেরদের দেশ পর্য়ন্ত এবং পূর্বদিকে ইষাখরের দেশ| 11 ইষাখর এবং আশের অঞ্চলেরও কয়েকটি শহর ছিল মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর আযত্ত্বাধীন| তারা বৈত্-শান, য়িব্লিযম এবং আশে-পাশের কয়েকটি ছোট শহরেও বাস করত| তারা দোর, ঐন্-দোর, তানক, মগিদ্দো এবং আশেপাশের ছোটখাট শহরগুলোয় থাকত| নাফোতের তিনটা শহরেও ছিল ওদের বসবাস| 12 মনঃশির লোকরা ঐসব শহর দখল করতে পারে নি| সেই জন্য কনানীয় লোকরা এসব অঞ্চলে বসবাস করত| 13 কিন্তু ইস্রায়েলবাসীরা বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠল| তারা জোর করে কনানদের তাদের সব কাজকর্ম করে দিতে বললো| তবে তাদের দেশ ছেড়ে চলে য়েতে জোর করে নি| 14 য়োষেফের পরিবারগোষ্ঠী যিহোশূয়কে বলল, “আপনি আমাদের শুধু একটা জায়গাই দিয়েছেন| কিন্তু আমরা এত জন| প্রভুর দেওয়া এতখানি জায়গা থেকে আপনি কেন আমাদের মাত্র এক ভাগ দিলেন?” 15 যিহোশূয় বললেন, “বেশ তোমরা যদি প্রচুর লোকজন হও তাহলে ওপরের অরণ্যে ঢাকা পাহাড়ী দেশে চলে যাও, সেখানকার বন কেটে পরিষ্কার করে ব্যবহারয়োগ্য কর| সে জায়গায় এখন পরিষীয় আর রফাযীয়রা থাকে| কিন্তু যদি পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িম তোমাদের জন্য যথেষ্ট না হয় তাহলে তোমরা আরো উচ্চ পাহাড়ী দেশে যাও এবং সেখানকার সব জায়গা দখল করো|” 16 য়োষেফের বংশধররা বলল, “এটা সত্যিই য়ে পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িম বেশ ছোট জায়গা| কিন্তু সেখানে বসবাসকারী কনানীয়দের কাছে আছে বেশ শক্তিশালী অস্ত্রশস্ত্র| তাদের আবার লোহার রথও আছে| কনানরা য়িষ্রিযেল উপত্যকা বৈত্-শান আর সেখানকার সব ছোটখাট শহর দখল করে রয়েছে|” 17 তখন যিহোশূয় য়োষেফ, ইফ্রয়িম এবং মনঃশির লোকদের বললেন, “কিন্তু তোমরাও সংখ্যায় প্রচুর| আর তোমরাও যথেষ্ট শক্তিশালী| তোমাদের জমির এক অংশের বেশী ভাগ পাওয়ার দরকার| 18 তোমরা পাহাড়ী দেশটা নিয়ে নাও| এটা বনজঙ্গল হলেও গাছগুলো কেটে বসবাসের উপযুক্ত করে নিও| সমস্ত জায়গা তোমরাই নিও| সেখান থেকে কনানীয়দের তাড়িয়ে দিও|তারা যদি শক্তিশালী হয় এবং তাদের কাছে যদি বেশী অস্ত্রশস্ত্রও থাকে তবু তোমরা তাদের নিশ্চয়ই পরাজিত করবে|”
1 সমস্ত ইস্রায়েলবাসী শীলোতে জড়ো হল| সেখানে তারা একটা সমাগম তাঁবু প্রতিষ্ঠা করল| ইস্রায়েলীয়রাই সেই দেশটা চালাত| সে দেশে সমস্ত শত্রুকে তারা হারিযেছিল| 2 কিন্তু সেই সময় সাতটা ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠী তখনও ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি মতো জমিজায়গা পায় নি| 3 তাই যিহোশূয় তাদের বললেন, “জমির জন্য তোমরা এতদিন অপেক্ষা করে বসে আছ কেন? তোমাদের প্রভু তোমাদের পিতৃপুরুষের ঈশ্বর তোমাদের তা দিয়েই দিয়েছেন|” 4 তাই বলছি প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী থেকে তিনজন করে লোক বেছে নাও| আমি তাদের জায়গাটা ভালো করে দেখার জন্য পাঠাব| তারা সেখানকার বর্ণনা লিখে নিয়ে আমার কাছে ফিরে আসবে| 5 তারা জায়গাটা সাত ভাগে ভাগ করবে| যিহূদার লোকরা পাবে দক্ষিনাংশ, য়োষেফের লোকরা পাবে উত্তর অংশ| 6 তোমরা অবশ্যই জায়গাটার বর্ণনা করে সেটাকে সাত ভাগে ভাগ করবে| মানচিত্রটা আমার কাছে আনবে| তারপর আমরা প্রভু, আমাদের ঈশ্বরকেই তা ঠিক করতে বলব কে কোন জমি পাবে| 7 লেবীয় যাজকরা জমির কোন অংশ পাবে না| যাজক হিসাবে তাদের কাজ হচ্ছে প্রভুর সেবা করা| এই তাদের অংশ| গাদ, রূবেণ এবং মনঃশির অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠী ইতিমধ্যেই প্রতিশ্রুত জমিজায়গা পেয়ে গিয়েছে| তারা বাস করে যর্দন নদীর পূর্বদিকে| প্রভুর দাস মোশি ইতিমধ্যেই তাদের জমিজায়গা দিয়ে দিয়েছেন|” 8 জায়গা দেখার জন্য মনোনীত লোকরা বের হয়ে গেল যাতে তারা জমির বর্ণনা দিতে পারে| যিহোশূয় তাদের বললেন, “তোমরা সেই জায়গায় যাও, ভালো করে দেখ আর সেখানকার একটা বর্ণনা লিখে নিয়ে এসো| তারপর শীলোতে আমার সঙ্গে দেখা করো| আমি তখন ঘুঁটি চালার ব্যবস্থা করব| য়েন প্রভুই তোমাদের মধ্যে জমি ভাগ করে দেন|” 9 তাই লোকরা সেই দেশে গেল, জায়গাটা ঘুরে ফিরে তারা দেখল এবং যিহোশূয়র জন্য একটা বর্ণনা তারা লিখল| তারা ঐ সমস্ত শহরগুলির একটি তালিকা প্রস্তুত করল এবং তারপর ভূখণ্ডটিকে সাত ভাগে ভাগ করল| মানচিত্র এঁকে নিয়ে তারা শীলোতে যিহোশূয়র কাছে ফিরে গেল| 10 যিহোশূয় সেখানে শীলোতে প্রভুর সামনে তাদের জন্য ঘুঁটি চাললেন| এই ভাবেই তিনি জমি ভাগাভাগি করে প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীকে তাদের অংশ দিলেন| 11 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছিল যিহূদা এবং য়োষেফের জায়গার মাঝখানের জমি| বিন্যামীনের প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠীই নিজের নিজের জায়গা পেয়ে গিয়েছিল| বিন্যামীনের জন্য মনোনীত জায়গাগুলো হল: 12 যর্দন নদী থেকে শুরু করে উত্তরের সীমানা, যা য়িরীহোর উত্তর দিক ঘেঁষে গিয়ে পশ্চিমে পাহাড়ী অঞ্চলের দিকে চলে গেছে| সীমানাটি বৈত্-আবনের ঠিক পূর্বদিক পর্য়ন্ত এগিয়ে গেছে| 13 দক্ষিণে লূস (বৈথেল) পর্য়ন্ত সীমানা গেছে| তারপর সীমা গেছে অষ্টারোত্-অদ্দরের দিকে| অষ্টারোত্-অদ্দর হচ্ছে নিম্ন বৈত্-হোরোণের দক্ষিণে পাহাড়ী জায়গায়| 14 বৈত্-হোরোণের দক্ষিণে পাহাড়ে এসে সীমানা দক্ষিণে বাঁক নিয়ে পাহাড়ের পশ্চিমদিকে চলে গেছে| সীমানা গিয়েছে কিরিযত্-বালে (কিরিযত্ য়িযারীম)| এই শহরটা যিহূদার লোকদের এটা পশ্চিম সীমা| 15 কিরিযত্-য়িযারীম থেকে শুরু হয়েছে দক্ষিণ সীমা, গেছে নিপ্তোহ নদীর দিকে| 16 তারপর রফাযীম উপত্যকার উত্তরে বেন-হিন্নোম উপত্যকার কাছে পাহাড়ের নীচে চলে গেছে এই সীমা| সীমানাটি য়িবুষীযদের শহরের ঠিক দক্ষিণদিকে হিন্নোম উপত্যকা পর্য়ন্তও বিস্তৃত হয়েছে| তারপর সেটি গেছে ঐন্-রোগেল পর্য়ন্ত| 17 সেখান থেকে সীমা ঘুরে উত্তরদিকে গেছে ঐন্-শেমশে, গলীলোত (অদুম্মীম গিরিজর্থের কাছে) পর্য়ন্ত| সেখান থেকে মহাশিলার দিকে; রূবেণের পুত্র রোহনের জন্যই এর নাম রাখা হয়েছে| 18 এই সীমা বৈত্-অরাবার উত্তরদিকে খাড়ি পর্য়ন্ত এসে যর্দন উপত্যকায নেমে গেছে| 19 তারপর বৈত্-হগ্লার উত্তরে আর শেষ হয়েছে মৃত সাগরের উত্তর উপকূলে| এখানেই যর্দন নদী সাগরে পড়েছে| আর এটাই হচ্ছে দক্ষিণ সীমা| 20 যর্দন নদী হচ্ছে পূর্ব সীমা| সুতরাং এটাই হচ্ছে বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর জন্য বিলি করা জমিজায়গা| এইসব হচ্ছে এদের জমি-জায়গার সব দিকের সীমানা| 21 প্রত্যেক পরিবারই জমি-জায়গা পেয়েছিল| এই সব হচ্ছে তাদের শহর: য়িরীহো, বৈত্-হগ্লা, এমক-কশিশ, 22 বৈত্-অরাবা, সমারযিম, বৈথেল, 23 অব্বীম, পারা, অফ্রা, 24 কফর-আম্মোনী, অফ্নি এবং গেবা| সেখানে 12 টি শহর এবং তাদের ঘিরে সব মাঠঘাট ছিল| 25 বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী আরো পেয়েছিল গিবিযোন, রামা, বেরোত্, 26 মিস্পী, কফীরা, মোত্সা, 27 রেকম, য়ির্পেল, তরলা, 28 সেলা, এলফ, য়িবুষদের শহর (জেরুশালেম) গিবিযোত্ এবং কিরিযাত্| মাঠঘাট নিয়ে 14টি শহর| বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী এই সমস্ত জায়গা পেল|
1 তারপর যিহোশূয় শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক পরিবারকে জমি-জায়গা দিলেন| সে সব জমি ছিল যিহূদার এলাকার ভেতরে| 2 তারা পেয়েছিল বের্-শেবা (শেবাও বলা য়েতে পারে), মোলাদা, 3 হত্সর-শূযাল, বালা, এত্সম, 4 ইল্তোলদ, বথূল, হর্মা, 5 সিক্লগ, বৈত্-মর্কাবোত্, হত্সর-সূষা, 6 বৈত্-লবাযোত্ এবং শারূহণ| চারপাশের মাঠঘাট নিয়ে 13টি শহর| 7 তারা আরও য়ে সব শহর পেয়েছিল সেগুলো হচ্ছে: ঐন, রিম্মোণ, এখর এবং আশন| চারপাশের মাঠঘাট নিয়ে চারটে শহর| এছাড়া তারা বালত্-বের (নেগেভের রামো) পর্য়ন্ত সমস্ত শহরের চারপাশের মাঠ-ঘাট পেল| 8 তাছাড়াও বালত্-বের পর্য়ন্ত সমস্ত শহরের চতুর্দিকের মাঠ| তাহলে এই হচ্ছে শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠীর এলাকা| প্রত্যেক পরিবারই জমি-জায়গা পেয়েছিল| 9 শিমিযোনের জমির অংশ যিহূদার এলাকার মধ্যেই ছিল| যিহূদার লোকরা দরকারের চেয়ে অনেক বেশী জমি পেয়েছিল| তাই তাদের জমির কিছু অংশ শিমিযোনের লোকরা পেয়েছিল| 10 এরপর জমি-জায়গা পেয়েছিল সবূলূন পরিবারগোষ্ঠী| এই গোষ্ঠীর প্রত্যেক পরিবারই পূর্ব প্রতিশ্রুতি মতো জমি-জায়গা পেয়েছিল| সবূলূনের সীমানা ছিল সুদূর সারীদ অবধি| 11 তারপর সীমানাটি পশ্চিম মুখে মারালার দিকে গেছে এবং দব্বেশত্ ছুঁযেছে| তারপর সীমা চলে গেছে য়ক্লিযামের উপত্যকা বরাবর| 12 তারপর সীমানা গেছে পূর্বদিকে বেঁকে সারীদ থেকে কিশ্লোত্-তাবোর পর্য়ন্ত, সেখান থেকে দাবরত্ আর যাফিযে| 13 আরও পূর্বদিকে গাত্-হেফর এবং এত্-কাত্সীনে, শেষ হয়েছে রিম্মোণে| তারপর সীমানা ঘুরে গেছে নেযের দিকে| 14 নেযে থেকে আবার বেঁকে গিয়ে উত্তরে হন্নাখোন হয়ে য়িপ্তহেল উপত্যকার দিকে চলে গেছে| 15 এই চৌহদ্দির মধ্যে য়েসব শহর রয়েছে সেগুলো হচ্ছে কটত্, নহলাল, শিম্রোণ, য়িদালা এবং বৈত্লেহম| মাঠঘাট নিয়ে মোট 12 টি শহর| 16 এই হল সবূলূনের শহরসমূহ আর মাঠঘাট| এই পরিবারের প্রত্যেকেই এই সব জায়গার ভাগ পেয়েছিল| 17 দেশের চতুর্থ অংশ দেওয়া হয়েছিল ইষাখর পরিবারগোষ্ঠীর| প্রত্যেক পরিবারই জমির ভাগ পেয়েছিল| 18 এদের দেওয়া হয়েছিল য়িষ্রিযেল, কনুল্লোত্, শূনেন, 19 হফারযিম, শীযোন, অনহরত্, 20 রব্বীত্, কিশিযোন, এবস, 21 রেমত্, ঐন্-গন্নীম, ঐন্-হদ্দা এবং বৈত্-পত্সেস| 22 জমির সীমানা হচ্ছে তাবর, শহত্সূমা এবং বৈত্শেমশ| শেষ হয়েছে যর্দন নদীতে| মোট 16টি শহর আর তাদের চারপাশের মাঠঘাট| 23 এই সব শহর ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছিল| প্রত্যেক পরিবারই জমির ভাগ পেয়েছিল| 24 দেশের পঞ্চম ভাগ আশের পরিবারগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছিল| সকলেই জমির অংশ পেয়েছিল| 25 তাদের দেওয়া হয়েছিল হিল্কত্, হলী, বেটন, অক্ষক, 26 অলম্মেলক, অমাদ আর মিশাল|পশ্চিম সীমা গেছে কর্মিল পর্বত এবং শীহোর-লিব্নত্ পর্য়ন্ত| 27 তারপর সীমানা মোড় নিয়েছে পূর্ব মুখে| এটি গেছে বৈত্-দাগোন পর্য়ন্ত| এটি সবূলূন এবং য়িপ্তহেল উপত্যকা ছুঁযেছে| তারপর এটি বৈত্-এমক এবং নীযেলের উত্তরদিকে চলে গেছে| সীমানাটি কাবুলের উত্তরদিকে বিস্তৃত হয়েছে| 28 সীমানা গেছে এব্রোণ, রহোব, হম্মোন এবং কান্না| এই ভাবে বৃহত্তর সীদোন অঞ্চল পর্য়ন্ত বিস্তৃত| 29 এরপর সীমানা রামার দক্ষিণদিকে ফিরে গেছে| সীমানাটি এগিয়ে গেছে শক্তিশালী সোর শহর পর্য়ন্ত| তারপর ঘুরে গেছে পশ্চিম দিকে হোষায, শেষ হয়েছে অকষীবের কাছে সমুদ্রে| 30 তাছাড়া উম্মা, অফেক এবং রহোব এইসব অঞ্চল| মোট 22টি শহর আর তাদের চারপাশের মাঠঘাট| 31 এই সব শহর আর মাঠঘাট ছিল আশের পরিবারগোষ্ঠীর জন্য| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীই জমির অংশ পেয়েছিল| 32 দেশের ষষ্ঠ অংশ পেল নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠী| প্রত্যেক পরিবারই জমির অংশ পেয়েছিল| 33 তাদের জায়গার সীমানা শুরু হয়েছে সানন্নীমের কাছে একটা বিরাট গাছ থেকে| গাছটা হেলফের কাছে অদামী-নেকব এবং য়কনিয়েলের ভেতর দিয়ে সীমানা লক্কুম হয়ে যর্দন নদীতে শেষ হয়েছে| 34 সীমাটি অস্ নোত্-তাবোরে এসে আবার পশ্চিমদিকে ফেরত্ গেছে| এটি হুক্কোকের কাছে উপত্যকা থেকে বেরিয়ে এসেছে| সবূলূন ছিল সীমাটির উত্তর দিকে, আশন ছিল পশ্চিমে| যিহূদাতে যর্দন নদী ছিল সীমাটির পূর্ব সীমা| 35 এই সব সীমানার মধ্যে কয়েকটা শক্তিশালী শহর রয়েছে| সেগুলো হচ্ছে: সিদ্দীম, সের, হম্মত্, রক্কত্, কিন্নেরত্, 36 অদামা, রামা, হাত্সোর, 37 কেদশ, ইদ্রিযী, ঐন্-হাত্সোর, 38 য়িরোণ, মিগ্দল-এল, হোরেম, বৈত্-অনাত্ এবং বৈত্-শেমশ মোট 19টি শহর এবং চারপাশের মাঠঘাট| 39 এইসব শহর আর মাঠঘাট নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছিল| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীই জমির ভাগ পেয়েছিল| 40 এরপর জমি-জায়গা দেওয়া হল দান পরিবারগোষ্ঠীকে| প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীই জমি পেয়েছিল| 41 তাদের দেওয়া হয়েছিল এই সব জায়গা: সরা, ইষ্টায়োল, ঈর্-শেমশ, 42 শালবীন, অযালোন, য়িত্লা, 43 এলোন, তিম্না, ইক্রোণ, 44 ইল্তকী, গিব্বথোন, বালত্, 45 য়িহূদ, বনে-বরক, গাত্-রিম্মোণ, 46 মেযর্কোণ, রক্কোন এবং যাফোর নিকটবর্তী জায়গাগুলো| 47 কিন্তু দানের লোকদের জায়গা পেতে ঝামেলায পড়তে হয়েছিল| শত্রুরা ছিল শক্তিশালী| তাদের তারা সহজে হারাতে পারে নি| সেই জন্য দানের লোকরা লেশমের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল| লেশম জয় করে তারা সেখানকার লোকদের হত্যা করে| এই ভাবে তারা লেশম শহরে বাস করেছিল| জায়গাটার নাম পাল্টে রাখলো দান| কারণ তাদের পরিবারগোষ্ঠীর পিতৃপুরুষের নাম ছিল দান| 48 এই সব শহর ও মাঠঘাট দান পরিবারগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছিল| প্রত্যেক পরিবারই জমি-জায়গার ভাগ পেয়েছিল| 49 এই ভাবে দলপতিরা জমি-জায়গা ভাগ বাঁটোযারা করে বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীকে দিয়েছিল| ভাগাভাগির কাজ শেষ হলে সমস্ত ইস্রায়েলবাসী নূনের পুত্র যিহোশূয়কে কিছু জমি দেবে বলে ঠিক করলো| 50 প্রভু আদেশ দিয়েছিলেন তিনি য়েন এই জমি-জায়গা পান| তাই ইস্রায়েলবাসীরা যিহোশূয়কে দিল পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িমের তিম্নত্-সেরহ নামক শহর| এই শহরটা ছিল যিহোশূয়র পছন্দ| তাই শহরটাকে বেশ ভালো করে মজবুত করে তৈরী করে, তিনি সেখানে বাস করতে থাকলেন| 51 এই ভাবে ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে এই সব জায়গা ভাগাভাগি করে দেওয়া হল| যাজক ইলিয়াসর নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানরা জমিজায়গা ভাগাভাগি করার জন্য শীলোতে একত্র হয়েছিলেন| সমাগম তাঁবুর দরজায প্রভুর সামনে তাঁরা সকলে সমবেত হয়েছিল| এই ভাবে তাঁরা জমি-জায়গা ভাগাভাগির কাজ শেষ করেছিলেন|
1 তারপর প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, 2 “আমি তোমাকে আদেশ দেবার জন্য মোশিকে ব্যবহার করেছিলাম| মোশি তোমাকে কয়েকটি শহর বাছতে বলেছিলেন য়েগুলো আশ্রয় দেবার জন্য বিশেষ শহর হিসেবে অভিহিত হবে| 3 যদি কোন ব্যক্তি অন্য কাউকে অকস্মাত্ অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে তাহলে সে ঐ নিরাপদ শহরগুলির একটিতে গিয়ে লুকিয়ে থাকতে পারবে, য়েন প্রতিশোধ দাতা খুঁজে না পায়| 4 “লোকটিকে যা করতে হবে তা এই: যখন সে ঐ ধরণের কোন শহরে ছুটে পালিয়ে যাবে তখন সেই শহরের প্রবেশ দ্বারে তাকে থামতে হবে| থেমে সেখানকার দলপতিদের কাছে জানাতে হবে ঘটনাটা কি হয়েছিল| সেই সব শুনে তারা তাকে শহরে ঢুকতে দিতে পারে| সেখানে থাকার জন্য তারা তাকে জায়গা দেবে| 5 কিন্তু য়ে ঐ ব্যক্তিটির পেছনে ধাওযা করবে সে হয়তো শহরে এসে তার পিছু নিতে পারে| এরকম ঘটলে নেতারা য়েন তাকে তাড়া করা ব্যক্তিটির হাতে ধরিযে না দেয়| তারা আশ্রয়প্রার্থীকে নিশ্চয়ই রক্ষা করবে| তারা এই কারণেই তাকে রক্ষা করবে য়ে, সে ইচ্ছা করে কাউকে হত্যা করে নি| সেটা নিছকই একটা দুর্ঘটনা| সে রেগে গিয়ে কাউকে হত্যা করবে বলে হত্যা করে নি| এটা হঠাত্ই ঘটে গেছে| 6 যতদিন না শহরের বিচার সভায তার বিচার হয় ততদিন সেই ব্যক্তি সেখানে থাকবে| মহাযাজক যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন সে সেখানে থাকতে পারবে| তারপর সে তার নিজের শহরে অর্থাত্ য়েখান থেকে সে পালিয়ে গিয়েছিল সেখানে নিজের বাড়ীতে ফিরে যাবে|” 7 তাই ইস্রায়েলবাসীরা কয়েকটা শহর ঠিক করে নিয়েছিল| তারা এগুলোর নাম দিল, “নিরাপত্তার শহর|” শহরগুলো হচ্ছে:নপ্তালি পার্বত্য অঞ্চলের গালীলের অন্তর্গত কেদশ; ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের শিখিম; যিহূদা পার্বত্য অঞ্চলের কিরিযত্-অর্ব (হিব্রোণ); 8 রূবেণের মরু অঞ্চলের অন্তর্গত য়িরীহোর কাছে যর্দন নদীর পূর্বদিকে বেত্সর; গাদ দেশে গিলিয়দের অন্তর্গত রামোত্; মনঃশির দেখে বাশনের অন্তর্গত গোলন| 9 য়ে কোন ইস্রায়েলবাসী বা তাদের সঙ্গে বসবাসকারী য়ে কোন বিদেশী হঠাত্ যদি কাউকে হত্যা করে, ঐসব শহরে নিরাপত্তার জন্য পালিয়ে য়েতে পারবে| সেখানে সে নিরাপদে থাকতে পারবে| য়ে তাকে ধরবার জন্য ছুটে আসছে সে তাকে হত্যা করতে পারবে না| আশ্রয়প্রার্থীর বিচার হবে সেই শহরের বিচারসভায|
1 লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানরা যাজক ইলিয়াসর নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানদের কাছে কথা বলতে গেল| 2 কনান দেশের শীলো শহরে এই আলোচনা বৈঠক হল| লেবীয় শাসকরা তাদের বলল, “প্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন য়ে তিনি য়েন আমাদের থাকার জন্যে কিছু শহরের ব্যবস্থা করেন| প্রভু তাকে আরও বলেছিলেন আমাদের পশুরা যাতে চরে খেতে পারে সে রকম কিছু মাঠও য়েন তিনি আমাদের দেন|” 3 সুতরাং ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুর এই নির্দেশ পালন করলো| তারা লেবীয়দের এই সব শহর ও পশুদের জন্য মাঠঘাট দিল| 4 লেবি পরিবারগোষ্ঠীর যাজক হারোণের উত্তরপুরুষরা হল এই কহাত্ পরিবার| কহাত্ পরিবারের একটা অংশকে দেওয়া হল 13টি শহর| সেই 13টি শহর ছিল যিহূদা, শিমিযোন আর বিন্যামীনদের| 5 বাকী কহাত পরিবারের দশটি শহর দেওয়া হল, সেই অঞ্চলে যেখানে ইফ্রয়িম, দান এবং মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকের অধীনে ছিল| 6 গের্শোন পরিবারের লোকদের দেওয়া হল 13টি শহর| এই শহরগুলি ছিল সেই অঞ্চল, য়েগুলি বাশনে বসবাসকারী ইষাখর, আশের, নপ্তালি এবং অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অধীনে ছিল| 7 মরারি পরিবারের লোকরা পেল 12টি শহর| রূবেণ, গাদ এবং সবূলূনদের অঞ্চলে ছিল এইসব শহর| 8 ইস্রায়েলের অধিবাসীরা তাদের চারপাশের এই সব শহর ও মাঠঘাট লেবীয়দের দিয়েছিল| প্রভু য়ে ভাবে মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, তা পালন করতেই তারা তাদের এই সব মাঠঘাট ও শহর দিয়েছিল| 9 যিহূদা এবং শিমিযোনের অঞ্চলে য়ে সব শহর ছিল এই হল সেগুলোর নাম| 10 কহাত পরিবারভুক্ত লেবীয়দের প্রথম শ্রেনীর শহরগুলি দেওয়া হল| 11 তারা ওদের দিয়েছিল কিরিযত্-অর্ব (এটা হচ্ছে হিব্রোণ| অনাকের পিতা অর্বের নামেই এর নামকরণ হয়েছিল|) পশুদের জন্য তারা শহরের কাছাকাছি কিছু মাঠও দিয়েছিল| 12 কিন্তু কিরিযত্-অর্বর চারপাশের ছোটছোট শহর আর মাঠগুলো ছিল য়িফূন্নির পুত্র কালেবের| 13 সেই জন্য তারা হারোণের উত্তরপুরুষদের হিব্রোণ শহরটা দিয়ে দিয়েছিল| (হিব্রোণ ছিল নিরাপদে বাস করার শহর|) এছাড়াও তারা হারোণের উত্তরপুরুষদের দিয়েছিল লিব্নার অন্তর্গত শহরগুলো, 14 য়ত্তীর, ইষ্টমোয, 15 হোলোন, দবীর, 16 ঐন, যুটা এবং বৈত্-শেমশ| তারা তাদের পশুদের জন্য এইসব শহরগুলোর আশেপাশের কিছু মাঠও দিয়েছিল| এই দুটি সম্প্রদাযের জন্য 9টি শহর দিয়েছিল| 17 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর শহরগুলোও তারা হারোণের উত্তরপুরুষদের দিয়েছিল| শহরগুলি হচ্ছে: গিবিয়োন, গেবা, 18 অনাথোত্ এবং অল্মোন| তারা তাদের এই চারটি শহর এবং তাদের পশুদের জন্য শহরের আশপাশের মাঠঘাট দিল| 19 মোট 13টি শহর তারা যাজকদের দান করেছিল| (যাজকরা সকলেই হারোণের উত্তরপুরুষ|) তারা পশুদের জন্যে প্রত্যেক শহরের লাগোযা মাঠও দিয়েছিল| 20 কহাত্ গোষ্ঠীর অন্যান্যদের দেওয়া হয়েছিল ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর এলাকার শহরগুলো| তারা পেয়েছিল এই সব শহর: 21 পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িমের শিখিম শহর (একটি আশ্রয় দেবার শহর)| তারা গেষরও পেল| 22 কিবসযিম এবং বৈত্-হোরোণও পেল| ইফ্রয়িমরা তাদের দিয়েছিল চারটে শহর এবং পশুদের জন্য চারপাশের কিছু মাঠ| 23 দান পরিবারগোষ্ঠী দিয়েছিল ইল্তকী, গিব্বথোন, 24 অযালোন এবং গাত্-রিম্মোণ| মোট চারটে শহর এবং শহরের লাগোযা মাঠ দানগোষ্ঠী তাদের দিয়েছিল| 25 অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী তাদের দিয়েছিল তানক এবং গাত্-রিম্মোণ| এই অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী তাদের মোট দুটি শহর এবং পশুদের জন্য শহরের চারপাশের মাঠঘাট দিয়েছিল| 26 তারপর কহাত পরিবারের বাকী লোকরা পেয়েছিল মোট দশটি শহর এবং পশুদের জন্য শহরের লাগোযা মাঠগুলো| 27 গের্শোন পরিবারও লেবি পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছে| তারা পেয়েছিল এই সব শহর:অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী থেকে বাশনের অন্তর্গত গোলন| (গোলন ছিল নিরাপত্তার শহর) তারা তাদের বীষ্টরা শহরও দিয়েছিল| সব মিলিযে মনঃশির এই অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠী তাদের মোট দুটি শহর এবং পশুদের জন্য কিছু মাঠ দিয়েছিল| 28 ইষাখর পরিবারগোষ্ঠী দিয়েছিল কিশিযোন, দাবরত্, 29 য়র্মুত্ এবং ঐন্-গন্নীম| মোট চারটি শহর এবং পশুদের জন্য মাঠ| 30 আশের পরিবারগোষ্ঠী থেকে পেয়েছিল মিশাল, আব্দোন, হিল্কত্ এবং 31 রহোব| মোট চারটি শহর এবং পশুদের জন্য শহরের লাগোযা মাঠ| 32 নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠী থেকে পেয়েছিল গালীলের অন্তর্গত কেদশ| (কেদশ ছিল নিরাপত্তার শহর|) তাছাড়া হম্মেত্-দোর, কর্ত্তন, মোট তিনটি শহর এবং পশুদের জন্য মাঠ| 33 গের্শোন পরিবার পেয়েছিল মোট 13টি শহর এবং পশুদের জন্য শহরগুলোর লাগোযা মাঠগুলো| 34 লেবীয় গোষ্ঠীর অন্য শাখা হচ্ছে মরারি পরিবার| তারা পেয়েছিল এই সব শহর:সবূলূন পরিবারগোষ্ঠী থেকে পেয়েছিল য়ক্লিযাম, কার্ত্তা, 35 দিম্না এবং নহলোল| সবূলূন মোট চারটি শহর এবং পশুদের জন্য মাঠ দিয়েছিল| 36 রূবেণ পরিবারগোষ্ঠী থেকে পেয়েছিল বেত্সর, য়হস, 37 কদেমোত্, মেফাত্| রূবেণ মোট চারটি শহর এবং পশুদের জন্য মাঠ দিয়েছিল| 38 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে পাওয়া গেল গিলিয়দের অন্তর্গত রামোত্| (রামোত্ ছিল নিরাপত্তার শহর|) তাছাড়া মহনযিম, 39 হিষ্বোণ এবং যাসের| গাদ মোট চারটি শহর আর পশুদের জন্য শহরের লাগোযা মাঠ দিয়েছিল| 40 লেবীয়দের শেষ পরিবার, মরারি পরিবার মোট 12 টি শহর পেয়েছিল| 41 সুতরাং লেবীয় গোষ্ঠী পেয়েছিল মোট 48 টি শহর এবং প্রতিটি শহরের লাগোযা পশুদের জন্য মাঠ| এই সব ছিল অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর| 42 প্রত্যেক শহরেই পশুদের জন্য কিছু মাঠ ছিল| 43 ইস্রায়েলবাসীদের কাছে প্রভু য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি পালন করলেন| তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি মতোই সব জমি জায়গা দিয়েছিলেন এবং লোকরা সেসব জায়গায় বসবাস করতে লাগল| 44 প্রভু তাদের আশেপাশের সমস্ত দেশগুলিতে তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে শান্তি বজায় রাখলেন| কোন শত্রুই তাদের পরাজিত করতে পারে নি| প্রত্যেক শত্রুকে হারাবার মতো ক্ষমতা প্রভু তাদের দিয়েছিলেন| 45 ইস্রায়েলবাসীদের কাছে প্রভু য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সবই তিনি রেখেছিলেন| কোনো প্রতিশ্রুতিই ব্যর্থ হয় নি| প্রত্যেক প্রতিশ্রুতিই বাস্তবে পরিণত হয়েছিল|
1 তারপর যিহোশূয় রূবেণ, গাদ এবং মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের একটা সভা ডাকলেন| 2 যিহোশূয় তাদের বললেন, “মোশি ছিলেন প্রভুর দাস| মোশি তোমাদের যা বলেছেন তোমরা তার সবই পালন করেছ| তাছাড়া তোমরা আমার নির্দেশও সব পালন করেছ| 3 তোমরা সব সময় ইস্রায়েলের অন্য লোকদের সাহায্য করেছ| তোমাদের প্রভু ঈশ্বর যা যা আদেশ দিয়েছিলেন তোমরা তার সবই অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছ| 4 তোমাদের প্রভু, ঈশ্বর, ইস্রায়েলবাসীদের শাস্তি দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| আর প্রভু প্রতিশ্রুতি রেখেছেন| সুতরাং এখন তোমরা বাড়ী য়েতে পার| প্রভুর দাস মোশি তোমাদের যর্দন নদীর পূর্বতীরের জমি-জায়গা দিয়েছেন| তোমরা এখন সে দেশে অর্থাত্ তোমাদের বাড়ী যাও| 5 কিন্তু মোশি তোমাদের য়েসব বিধি পালন করতে বলেছেন সেসব পালন করে চলতে ভুলো না| তোমরা প্রভু ঈশ্বরকে ভালোবাসবে| তাঁর আদেশ পালন করবে| তোমরা সবসময় তাঁকে মেনে চলবে| তোমাদের যতদূর সাধ্য সেই ভাবে তোমরা তাঁর অনুসরণ করবে ও তাঁর সেবা করবে|” 6 তারপর যিহোশূয় তাদের বিদায সম্ভাষণ জানালেন| তারা বাড়ী চলে গেল| 7 মোশি মনঃশির অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠীকে বাশনের জমি-জায়গা দিয়েছিলেন| বাকী মনঃশির অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠীকে তিনি দিয়েছিলেন যর্দন নদীর পশ্চিম তীর| যিহোশূয় তাদের আশীর্বাদ করে নিজের জায়গায় পাঠিয়ে দিলেন| 8 তিনি বললেন, “তোমরা এখন বেশ ধনী হয়েছ| তোমাদের অনেক পশু আছে| তোমাদের আছে অনেক সোনা, রূপো এবং দামী দামী গযনাগাটি| তোমাদের আছে সুন্দর সুন্দর পোশাক| শত্রুদের কাছ থেকে অনেক কিছুই তোমরা পেয়েছ| এইসব জিনিস তোমাদের ভাইদের সঙ্গে, যারা যর্দন নদীর পূর্বদিকে রযে গেছে, তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিও|” 9 সুতরাং রূবেণ, গাদ ও মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেক ইস্রায়েলের অন্য লোকদের রেখে চলে গেল| তারা কনানের শীলোতে ছিল| সে জায়গা ছেড়ে দিয়ে তারা গিলিয়দে ফিরে গেল| তারা ফিরে গেল মোশির দেওয়া জায়গায়| প্রভু মোশিকে তাদের এই জায়গা দেবার জন্যই আদেশ দিয়েছিলেন| 10 রূবেণ, গাদ ও মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেক লোকরা গিলিয়দ নামে একটি জায়গায় গেল| জায়গাটা কনানের অন্তর্গত যর্দন নদীর কাছেই| সেখানে তারা একটা চমত্কার বেদী বানালো| 11 ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকরা যারা তখনও শীলোতে ছিল, শুনতে পেল য়ে এই তিন পরিবারগোষ্ঠী এরকম একটা বেদী তৈরী করেছে| তারা এও শুনল য়ে বেদীটা হয়েছে কনানের সীমান্তে গিলিয়দ নামক একটি জায়গায়| সেটা ইস্রায়েলের দিকের যর্দন নদীর কাছেই| 12 এসব শুনে ইস্রায়েলের সব লোক এই তিনটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর বেশ রেগে গেল| তারা একসঙ্গে মিলিত হয়ে এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে বলে ঠিক করল| 13 সেই জন্য ইস্রায়েলের লোকরা কয়েক জনকে পাঠালো রূবেণ, গাদ এবং মনঃশির লোকদের সঙ্গে কথা বলতে| এই সব ইস্রায়েলীয়দের নেতা ছিল পীনহস| পীনহস হচ্ছে যাজক ইলিয়াসরের পুত্র| 14 ইস্রায়েলবাসীরা এছাড়াও তাদের পরিবারগোষ্ঠীর দশজন নেতাকে সেখানে পাঠিয়েছিল| প্রতিটি গোষ্ঠী থেকে একজন করে নেতা পাঠানো হয়েছিল| এরা থাকত শীলোতে| 15 সেই জন্য এই এগার জন লোক গিলিয়দে গেল| তারা রূবেণ, গাদ ও মনঃশির লোকদের বলল, 16 “ইস্রায়েলের সব লোক তোমাদের কাছে জানতে চায কেন ইস্রায়েলের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তোমরা এই কাজ করলে? কেন তোমরা প্রভুর বিরুদ্ধাচাণ করেছ? কেন তোমরা নিজেদের জন্য বেদী তৈরী করলে? তোমরা তো জান এটা ঈশ্বরের শিক্ষার বিরুদ্ধাচারণ| 17 পিযোরে কি হয়েছিল মনে পড়ে? সেই পাপের ফল আজও আমরা ভোগ করেছি| সেই মহাপাপের জন্য ঈশ্বর বহু ইস্রায়েলবাসীকে প্রবল অসুখে আক্রান্ত করেছিলেন| সেই অসুস্থতার ফল আজও আমরা ভোগ করছি| 18 আর এখন তোমরা সেই একই কাজ করছো? তোমরা প্রভুর ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ করছ| তোমরা কি প্রভুর অনুসরণ অগ্রাহ্য করবে? যদি এখনও না ক্ষান্ত হও, তাহলে ইস্রায়েলের প্রতিটি মানুষের উপরই তিনি ক্রুদ্ধ হবেন| 19 “যদি তোমাদের দেশকে অবমাননা করা হয় তাহলে আমাদের দেশে চলে এসো| প্রভুর পবিত্র তাঁবু আমাদের দেশে রয়েছে| তোমরা আমাদের এখানে কিছু জমি-জায়গা পেতে পার| সেখানে তোমরা বসবাস করতে পার কিন্তু কখনও প্রভুর বিরুদ্ধে য়েও না| আর কোন বেদী তৈরী করো না| আমরা তো ইতিমধ্যেই সমাগম তাঁবুতে আমাদের প্রভু ও ঈশ্বরের একটা বেদী পেয়েছি| 20 “সেরহের পুত্র আখনের কথা একবার মনে করে দেখ| সে বর্জিত বস্তু সম্বন্ধে ঈশ্বরের আজ্ঞা মানেনি| সেই লোকটি ঈশ্বরের বিধি ভেঙ্গে ছিল, কিন্তু তার জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত লোককে শাস্তিভোগ করতে হয়েছিল| আখন তার পাপের জন্য মারা গিয়েছিল, কিন্তু একই কারণে আরো অনেক লোক মারা গিয়েছিল|” 21 তখন রূবেণ, গাদ ও মনঃশির লোকরা ঐ এগারো জনকে বলল, 22 “প্রভু হলেন আমাদের ঈশ্বর| আবার বলছি প্রভুই হচ্ছেন আমাদের ঈশ্বর| কেন আমরা বেদী করেছি তা তিনি জানেন| এবার তোমরাও তা জেনে রাখো| আমরা কি করেছি তা তোমরা বিচার করে দেখ| যদি তোমাদের মনে হয় আমরা কিছু অন্যায় করেছি তাহলে আমাদের তোমরা মেরে ফেল| 23 যদি আমরা ঈশ্বরের বিধি ভঙ্গ করে থাকি তাহলে তাঁকে বল তিনি য়েন নিজে আমাদের শাস্তি দেন| 24 তোমরা কি মনে কর য়ে আমরা এই বেদী বানিয়েছি হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য ও মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য? না মোটেই তা নয়| কেন বেদী বানিয়েছি জানো? আমাদের ভয় ছিল ভবিষ্যতে তোমাদের লোকরা আমাদের মেনে নেবে না য়ে আমরাও তোমাদেরই লোক| আমরা তোমাদেরই জাতি| সেদিন তোমাদের লোকরাই বলবে ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরকে উপাসনা করার অধিকার আমাদের নেই| 25 ঈশ্বর আমাদের যর্দন নদীর অন্য পারে থাকতে দিয়েছেন| এর অর্থ নদীই আমাদের আলাদা করে দিয়েচে, আমাদের ভয় ছিল তোমাদের সন্তানরা বড় হয়ে যখন দেশ শাসন করবে তখন তারা মনেও করবে না য়ে আমরা তোমাদেরই লোক| তখন তারা বলবে, “তোমরা রূবেন আর গাদের লোক, তোমরা কেউ ইস্রায়েলের নও|’ তখন তোমাদের সন্তানরা আমাদের সন্তানসন্ততিদের প্রভুর উপাসনা করতে দেবে না| 26 “তাই আমরা এই বেদী তৈরী করার সংকল্প করেছিলাম| আমরা হোমবলি আর অন্যান্য কিছু উত্সর্গ করার জন্য বেদী বানাই নি| 27 হচ্ছে বেদী তৈরীর উদ্দেশ্য তোমাদের জানানো য়ে আমরা সেই একই ঈশ্বরের উপাসনা করছি য়ে ঈশ্বর তোমাদের| এই বেদীই তোমাদের কাছে আমাদের কাছে আর আমাদের ভবিষ্যত্ বংশধরদের কাছে প্রমাণ করবে য়ে আমরাও প্রভুর উপাসনা করি| আমরা আমাদের নৈবেদ্য, শস্য নৈবেদ্য এবং মঙ্গল নৈবেদ্য প্রভুকে উত্সর্গ করি| আমরা চাই য়ে তোমাদের সন্তানরা বড় হয়ে জানুক য়ে, আমরাও তোমাদের মতোই ইস্রায়েলবাসী| 28 ভবিষ্যতে যদি তোমাদের বংশধররা বলে আমরা কেউ ইস্রায়েলীয় নই তখন আমাদের বংশধররা বলবে, ‘ঐ দেখো আমাদের পিতারা এই বৈদী তৈরী করে দিয়েছেন| এই বেদী পবিত্র তাঁবুতে প্রভুর য়ে বেদী আছে হুবহু তারই মতো| এই বেদী আমরা কোন কিছু উত্সর্গ করার জন্য করি নি, আমরা য়ে ইস্রায়েলবাসী তারই প্রমাণ হিসাবে আমরা এটি নির্মাণ করেছি|’ 29 “সত্যি বলছি আমরা প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করতে চাই নি| আমরা তাঁকে মানতে চাই| আমরা জানি পবিত্র তাঁবুর সামনে য়ে বেদী রয়েছে সেটাই একমাত্র সত্যিকারের বেদী| সেই বেদীই আমাদের প্রভু ঈশ্বরের বেদী|” 30 যাজক পীনহস আর তাঁর সঙ্গী সাথী নেতারা রূবেণ, গাদ এবং মনঃশির লোকদের কাছ থেকে এই সব শুনলেন| তারা এদের কথা শুনে খুশী হলেন, বুঝতে পারলেন য়ে এরা সত্যি কথাই বলেছে| 31 তাই পীনহস বললেন, “আজ আমরা জানি য়ে প্রভু আমাদের সঙ্গেই আছেন এবং আমরা এও জানি য়ে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে নই| এবং আমরা জানি য়ে ইস্রায়েলের লোকদের প্রভু শাস্তি দেবেন না|” 32 তারপর নেতাদের সঙ্গে নিয়ে পীনহস সেখান থেকে নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন| রূবেণ এবং গাদের দেশ গিলিয়দ থেকে তাঁরা কনানে ফিরে গিয়ে ইস্রায়েলবাসীদের সব কিছু জানালেন| 33 শুনে তারাও খুশী হল| তারা খুশী হয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাল| রূবেণ, গাদ ও মনঃশির দেশ তারা ধ্বংস করবে না বলে স্থির করল| 34 রূবেণ এবং গাদের লোকরা বেদীটার একটা নাম দিল| যার অর্থ হল: “এই বেদী হচ্ছে আমাদের প্রভু ঈশ্বরের বিশ্বাসের প্রতীক|”
1 প্রভু ইস্রায়েলকে তাদের চারপাশের শত্রুদের থেকে বিশ্রাম দিলেন| সে দেশকে নিরাপদ করলেন| তারপর বহু বছর কেটে গেল| যিহোশূয় বেশ বৃদ্ধ হলেন| 2 তারপর একদিন তিনি সমস্ত প্রবীণ নেতাদের, পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানদের, ইস্রায়েলের উচ্চ পদস্থ কর্মচারীদের এবং বিচারকদের একটি সভা ডাকলেন| তিনি বললেন, “আমার বযস হয়েছে| 3 তোমরা দেখেছ প্রভু আমাদের শত্রুদের কি অবস্থা করেছেন| আমাদের উপকার করার জন্যেই তিনি এমন কাজ করেছেন| 4 মনে আছে আমি তোমাদের বলেছিলাম, যর্দন নদী আর ভূমধ্যসাগরের মধ্যে হবে তোমাদের দেশ? সেই দেশ আমি তোমাদের দেব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা এখনও তা অধিকার করো নি| 5 কিন্তু প্রভু তোমাদের ঈশ্বর সেখানকার লোকদের সেই জায়গা ছেড়ে দিতে বাধ্য করবেন| তোমরা সেই জায়গা অধিকার করবে| প্রভু তাদের সেখান থেকে বলপূর্বক বিদায করবেন| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের জন্যে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| 6 “প্রভু তোমাদের যা যা আদেশ দিয়েছেন সেসব তোমরা অবশ্যই পালন করবে| মোশির বিধি পুস্তকে য়ে সব লেখা আছে সেই সব পালন করবে| ঐ বিধি থেকে বিচ্যুত হযো না| 7 আমাদের মধ্যে এখনও কিছু লোক আছে যারা ইস্রায়েলের কেউ নয়| তারা তাদের নিজেদের দেবতার পূজা করে| তোমরা তাদের দেবতাদের সেবা অথবা পূজা করবে না| প্রতিশ্রুতি নেবার সময় তাদের দেবতাদের নাম তোমাদের নেওয়া উচিত্ হবে না| 8 তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের অনুসরণ করে চলবে| আগেও তোমরা তাই করেছিলে, সর্বদাই তোমরা তাই করবে| 9 “অনেক বড় বড় শক্তিশালী জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে প্রভু তোমাদের সাহায্য করেছিলেন| প্রভু তাদের জোরপূর্বক তাড়িয়ে দিয়েছেন| কোন জাতিই তোমাদের পরাজিত করতে পারবে না| 10 প্রভুর দযায় ইস্রায়েলের একজন লোকই শত্রু পক্ষের 1,000 সৈন্যকে পরাজিত করতে পারবে| এর কারণ কি? কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করেন| 11 তাই বলছি সব সময় প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে প্রেম নিবেদন করবে| 12 “প্রভুর অনুসরণ করা বন্ধ করো না| যারা ইস্রায়েলের কেউ নয় তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে না| তাদের কারোর সঙ্গে বিবাহ সম্বন্ধ করো না| 13 যদি তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করো তাহলে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের শত্রু দমনের কাজে সাহায্য করবেন না| এই সব লোকই হচ্ছে তোমাদের মরণ ফাঁদ| চোখে ধূলো বা ধোঁযা ঢোকার মতো এরা তোমাদের যন্ত্রণা দেবে| এই উত্তম দেশ থেকে সরে য়েতে তখন তোমরা বাধ্য হবে| প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের এই দেশ দিয়েছেন| কিন্তু তাঁর আদেশ না মানলে এই দেশ তোমরা হারাবে| 14 “আমার মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে| তোমরা জান এবং সত্যই বিশ্বাস করো য়ে প্রভু তোমাদের মধ্যে কতো মহান কাজ করেছেন| তোমরা জানো তাঁর দেওয়া কোন প্রতিশ্রুতি বিফল হয় নি| আমাদের কাছে তিনি যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সবই তিনি রেখেছেন| 15 তোমাদের প্রভু ঈশ্বর য়ে কটি ভালো প্রতিশ্রুতি করেছিলেন আমাদের কাছে তার প্রত্যেকটি আজ সত্যে পরিণত হয়েছে| একই ভাবে তিনি তাঁর অন্যান্য প্রতিশ্রুতিও সফল করে তুলবেন| তিনি বলেছিলেন যদি তোমরা অন্যায় করো তাহলে তোমাদের অমঙ্গল হবে| তিনি প্রতিশ্রুতি করে বলেছিলেন, অন্যায় করলে তিনি তোমাদের জোর করে এই সুন্দর দেশ থেকে বিতাড়িত করবেন| 16 তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছ তা ভঙ্গ করলে এই দশাই হবে| যদি তোমরা অন্যান্য দেবতার সেবা কর তাহলে এই দেশ তোমাদের হারাতে হবে| অন্য দেবতাদের তোমরা কিছুতেই আরাধনা করবে না| যদি করো প্রভু তোমাদের উপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হবেন আর এর ফলে তাঁর দেওয়া দেশ থেকে অচিরেই তোমাদের চলে য়েতে বাধ্য করা হবে|”
1 ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে যিহোশূয় এক সঙ্গে শিখিমে জড়ো করলেন| প্রবীণ নেতাদের, পরিবারের কর্তাদের, বিচারকদের এবং পদস্থ কর্মচারীদের তিনি ডাকলেন| তারা সকলেই ঈশ্বরের সামনে দাঁড়ালো| 2 তারপর যিহোশূয় সকলকে বললেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাদের যা যা বলছেন আমি সেসব বলছি|বহুকাল আগে তোমাদের পূর্বপুরুষরা থাকতেন ফরাত্ নদীর ওপারে| আমি অব্রাহামের পিতা, নাহোরের পিতা এবং তেরহ এঁদের মতো লোকদের কথাই বলছি| তখন তাঁরা অন্যান্য দেবতাদের আরাধনা করতেন| 3 কিন্তু আমি প্রভু বয়ং তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহামকে ফরাত্ নদীর ওপারের দেশ থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলাম এবং তাঁকে কনানের ভেতর দিয়ে নিয়ে এসেছিলাম এবং তাঁর বংশবৃদ্ধি করেছিলাম| তারপর তাঁকে দিলাম অসংখ্য সন্তান| অব্রাহামকে আমি একটি সন্তান দিলাম| তার নাম ইসহাক| 4 ইসহাককে আমি যাকোব এবং এষৌ নামে দুটি সন্তান দিলাম| এষৌকে দিলাম সেযীর পর্বতের চারিদিকের জমি| সেখানে যাকোব আর তার পুত্ররা থাকত না| তারা চলে গিয়েছিল মিশরে| 5 তারপর আমি মোশি আর হারোণকে মিশরে পাঠালাম| পাঠানোর উদ্দেশ্য মিশর থেকে আমার লোকদের বের করে আনা| আমি মিশরের লোকদের ভয়ঙ্কর কষ্টের মুখে ফেলেছিলাম| আর এই ভাবেই আমি তোমাদের লোকদের মিশর থেকে বের করে আনলাম| 6 এভাবেই তোমাদের পূর্বপুরুষদের আমি মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলাম| লোহিত সাগরের দিকে তারা চলে এসেছিল আর তাদের পিছু নিয়েছিল মিশরীয়রা| তাদের ছিল কত রথ, কত ঘোড়া আর কত লোক| 7 তাই লোকরা আমার কাছে অর্থাত্ প্রভুর কাছে সাহায্য ভিক্ষা করল| আমি মিশরের লোকদের ঘোর কষ্টের মধ্যে ফেললাম| আমি প্রভু সমুদ্র দিয়ে তাদের আড়াল করলাম| তোমরা তো নিজেরাই দেখেছিলে মিশরের সৈন্যবাহিনীর কি অবস্থা আমি করেছিলাম|তারপর তোমরা বহুদিন মরুভূমিতে কাটিযেছিলে| 8 এরপর আমি তোমাদের নিয়ে এসেছিলাম ইমোরীয়দের দেশে| দেশটা ছিল য়র্দনের পূর্বতীরে| ওরা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল বটে, কিন্তু আমি তাদের হারাবার জন্য তোমাদের শক্তি দিয়েছিলাম| তাদের বিনাশ করার মতো ক্ষমতা আমি তোমাদের দিয়েছিলাম| তারপর তোমরা সেই দেশের দখল নিলে| 9 তারপর মোয়াবের রাজা বালাক সিপ্পোরের পুত্র ইস্রায়েলবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্যে তোড়জোড় করতে লাগল| সে ডেকে পাঠাল বালামকে| বালাম হচ্ছে বিযোরের পুত্র| সে বালামকে তোমাদের অভিশাপ দিতে বলল| 10 কিন্তু আমি প্রভু, বালামের অভিশাপ শুনতে সম্মত হলাম না| অভিশাপের বদলে সে তোমাদের করল আশীর্বাদ| একবার নয়, বারবার| এভাবেই আমি তোমাদের বাঁচিয়েছিলাম| আমি তোমাদের বিপদ থেকে রক্ষা করেছিলাম| 11 তারপর তোমরা যর্দন নদী পেরিয়ে য়িরীহোয এলে| য়িরীহোর লোকরা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল| তাছাড়া ইমোরীয়, পরিষীয়, কনানীয়, হিত্তীয়, গির্গাশীয, হিব্বীয় আর যিবূষীয় লোকরাও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল| কিন্তু সমস্ত যুদ্ধেই আমি তোমাদের জিতিযে দিলাম| 12 তোমাদের সৈন্যরা যখন এগিয়ে যাচ্ছিল তখন আমি তাদের আগে আগে ভীমরুল পাঠালাম| ভীমরুলের ভয়েই লোকরা পালিয়ে গেল| তাই তরবারি, তীরধনুক ছাড়া তোমরা সেই দেশ জয় করে নিলে| 13 আমি প্রভু তোমাদের সেই জমি-জায়গা দিয়েছিলাম| তোমরা ঐসব শহর তৈরী কর নি, আমিই সেসব তোমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলাম| আজ তোমরা সেই সব জায়গায় আর শহরে বসবাস করছ| দ্রাক্ষার বাগান, জলপাইগাছ সবই তোমাদের আছে| কিন্তু একটা গাছের চারাও তোমাদের পুঁতে দিতে হয় নি|” 14 তখন যিহোশূয় লোকদের বললেন, “এখন শুনলে তো প্রভুর বাণী| তাই বলছি তোমরা অবশ্যই প্রভুকে শ্রদ্ধাভক্তি করবে এবং আন্তরিকভাবে তাঁর সেবা করবে| তোমাদের পূর্বপুরুষরা য়ে সব মূর্ত্তির পূজা করেছিল, তাদের তোমরা ছুঁড়ে ফেলে দাও| বহুকাল আগে এইসব ঘটনা ঘটেছিল ফরাত্ নদীর ওপারে আর মিশরে| এখন থেকে তোমরা শুধু প্রভুরই সেবা করবে| 15 “কিন্তু এমনও তো হতে পারে য়ে, তোমরা চাও না এই প্রভুর সেবা করতে| তাহলে আজই তোমরা নিজেরাই ঠিক করো কাকে তোমরা সেবা করবে| ফরাত্ নদীর অন্য পারে তোমাদের পূর্বপুরুষরা য়েসব দেবতাদের পূজা করত তোমরা কি তাদের সেবা করবে, নাকি এদেশের ইমোরীয়রা য়ে সব দেবতাদের উপাসনা করত তাদের সেবা করবে? নিজেরাই সেটা ঠিক করো| কিন্তু আমি আর আমার পরিবার সম্পর্কে বলতে পারি, আমরা প্রভুরই সেবা করব|” 16 তখন লোকরা উত্তর দিল, “ আমরা প্রভুর সেবা থেকে কখনই বিরত হবো না| আমরা কখনই অন্য দেবতাদের পূজা করবো না| 17 আমরা জানি প্রভু আমাদের ঈশ্বরই মিশর থেকে আমাদের বের করে এনেছিলেন| সে দেশে আমরা ছিলাম ক্রীতদাস| কিন্তু প্রভু সেখানে আমাদের জন্য মহাকার্য়্য় সাধন করেছিলেন| সে দেশ থেকে তিনিই আমাদের উদ্ধার করেছিলেন| অন্যান্য দেশে যাবার সময় তিনিই আমাদের রক্ষা করেছিলেন| 18 সেই সব দেশে বসবাসকারী লোকদের পরাজিত করতে প্রভুই আমাদের সাহায্য করেছিলেন| আমরা আজ যেখানে রযেছি সেখানে ইমোরীয়দের পরাজিত করতে তিনিই আমাদের সাহায্য করেছিলেন| তাই আমরা তাঁর সেবা করতে থাকব| কেন? কারণ তিনিই আমাদের ঈশ্বর|” 19 যিহোশূয় বললেন, “মিথ্যা কথা| তোমরা প্রভুর সেবা চিরকাল করতে পারবে না| প্রভু ঈশ্বর পরম পবিত্র| প্রভুর লোকরা যদি অন্য দেবতার পূজা করে ঈশ্বর তাদের ঘৃণা করেন| এই ভাবে তোমরা যদি ঈশ্বরের ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাও তাহলে তিনি তোমাদের ক্ষমা করবেন না| 20 কিন্তু তোমরা তো প্রভুকে ছেড়ে অন্যান্য দেবতাদেরই আরাধনা করবে| তাহলে প্রভু তোমাদের সাংঘাতিক দুর্ভোগ দেবেন এবং তিনি তোমাদের বিনাশ করবেন| প্রভু তোমাদের মঙ্গল সাধন করেছেন, কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করলে তিনি তোমাদের ধ্বংস করবেন|” 21 লোকরা যিহোশূয়কে বলল, “না! আমরা তাঁর বিরুদ্ধে যাব না| আমরা প্রভুরই সেবা করব|” 22 যিহোশূয় বললেন, “তোমরা নিজেদের দিকে তাকাও| এখানে যারা এসেছে তাদের দিকে তাকাও| তোমরা কি সব জেনে শুনে সম্মত আছে য়ে তোমরা প্রভুর সেবা করবে? তোমরা সকলে এই ঘোষণার সাক্ষী আছ তো?”তারা বলল, “হ্যাঁ, আমরা সাক্ষী হলাম| আমরা প্রভুর সেবা করব বলে য়ে কথা দিলাম, তা যাতে পালন করতে পারি সে বিষয়ে আমরা লক্ষ্য রাখব|” 23 তখন যিহোশূয় বললেন, “সুতরাং তোমাদের মধ্যে য়ে মূর্ত্তিগুলো আছে তা তোমরা ছুঁড়ে ফেলে দাও| ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরকে তোমাদের সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে ভালোবাসো|” 24 তারা যিহোশূয়কে বলল, “আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরের সেবা করব| আমরা তাঁর আদেশ পালন করব|” 25 তাই সেদিন যিহোশূয় শিখিম শহরে তাদের সঙ্গে এক চুক্তি করলেন| শিখিম শহরে এই চুক্তি হল তাদের কাছে নিয়মের মতো, য়ে নিয়ম তারা পালন করবে| 26 যিহোশূয় সে সব ঈশ্বরের বিধির পুস্তকে লিখে রাখলেন| তারপর যিহোশূয় একটা বিরাট পাথর দেখতে পেলেন| সেই পাথরটাই হচ্ছে চুক্তির সাক্ষ্য প্রমাণ| প্রভুর পবিত্র তাঁবুর কাছে ওক গাছের নীচে সেই পাথরটিকে তিনি স্থাপন করলেন| 27 তখন যিহোশূয় সমস্ত লোকদের বললেন, “আজ আমরা তোমাদের যা বললাম এই পাথর সে সব তোমাদের মনে করিযে দেবে| এই পাথরটি হবে সেই বস্তু যা তোমাদের মনে করিযে দেবে আজ কি হল এবং এটি তোমাদের কাছে তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করতে বিরত করবার জন্য একটি সাক্ষী হয়ে থাকবে|” 28 তারপর যিহোশূয় সকলকে বাড়ী চলে য়েতে বললেন| সকলে য়ে যার জায়গায় ফিরে গেল| 29 তারপর নূনের পুত্র যিহোশূয় মারা গেলেন| মৃত্যুকালে তাঁর বযস হয়েছিল 110 বছর| 30 তাঁর নিজের জায়গা তিন্নত্-সেরহে তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল| গাশ পর্বতের উত্তরে পাহাড়ী শহর ইফ্রয়িমে এই তিন্নত্ সেরহ অবস্থিত| 31 যিহোশূয় যতদিন বেঁচে ছিলেন ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুর সেবা করেছিল| এমনকি যিহোশূয়র মৃত্যুর পরও তারা প্রভুর সেবা চালিয়ে গেল| যতদিন তাদের নেতারা বেঁচ্ছেিলেন লোকরা প্রভুর সেবা করেছিল| এই নেতারা ইস্রায়েলের জন্য প্রভুর সমস্ত কর্মকাণ্ড সচক্ষে দেখেছিলেন| 32 মিশর ছেড়ে চলে আসার সময় ইস্রায়েলবাসীরা সঙ্গে করে এনেছিল য়োষেফের অস্থি| তারা শিখিমে তাঁর অস্থিগুলি সমাহিত করল| তারা সেই জায়গায় কবর দিল য়ে জায়গাটি যাকোব 100টি খাঁটি রূপোর মুদ্রা দিয়ে শিখিমের পিতা হমোরের কাছ থেকে কিনেছিলেন| এই জায়গাটিতে য়োষেফের সন্তান সন্ততিরা বাস করছে| 33 হারোণের পুত্র ইলিয়াসর মারা গেলে গিবিয়ায় তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল| গিবিয়া ইফ্রয়িমের পাহাড়ী অঞ্চলে অবস্থিত| ইলিয়াসরের পুত্র পীনহসকে গিবিয়া দান করা হয়েছিল|
1 যিহোশূয় মারা গেলেন| ইস্রায়েলবাসীরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে জিজ্ঞাসা করল, “আমাদের পরিবার গোষ্ঠীদের মধ্যে সবচেয়ে আগে কে কনানীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবে?” 2 প্রভু তাদের বললেন, “সবচেয়ে আগে যাবে যিহূদা গোষ্ঠী| আমি তাদেরই এই দেশ জয় করতে দেবো|” 3 যিহূদার পুরুষরা তাদের শিমিয়োন পরিবারগোষ্ঠীর ভাইদের কাছ থেকে সাহায্য চাইল| যিহূদার লোকরা বলল, “ভাইসব, প্রভু আমাদের প্রত্যেককে কিছু জমিজায়গা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন| যদি তোমরা যুদ্ধের জন্য আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসো তাহলে আমরাও কনানীয়দের বিরুদ্ধে তোমাদের জমির লড়াইয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসব|” শিমিযোনের লোকরা যিহূদার ভাইদের যুদ্ধে সাহায্য করতে রাজী হল| 4 প্রভুর সাহায্যে যিহূদার লোকরা কনানীয় ও পরিষীয়দের পরাজিত করল| তারা বেষক শহরের 10,000 লোককে হত্যা করেছিল| 5 বেষক শহরে যিহূদার লোকরা সেখানকার রাজাকে পেয়ে তার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল| যিহূদার লোকরা কনানীয় এবং পরিষীয়দের পরাজিত করেছিল| 6 বেষকের শাসক পালাবার চেষ্টা করেছিল| কিন্তু যিহূদার লোকরা তার পিছু নিয়ে তাকে ধরে ফেলেছিল| তারা রাজার হাত ও পায়ের বুড়ো আঙ্গুল কেটে ফেলেছিল| 7 তখন বেষকের শাসক বলল, “আমি নিজে 70 জন রাজার হাত ও পায়ের বুড়ো আঙ্গুল কেটে দিয়েছিলাম| আমার টেবিল থেকে যেসব খাবারের টুকরো পড়ে যেত তাই তাদের খেতে হত| আজ ঈশ্বর আমার সেই অধর্মের প্রতিফল দিলেন|” যিহূদার লোকরা বেষকের শাসককে জেরুশালেমে নিয়ে গেল| সেখানেই তার মৃত্যু হল| 8 যিহূদার লোকরা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা অধিকার করল| জেরুশালেমের লোকদের তারা তরবারি দিয়ে হত্যা করেছিল এবং হত্যার পর জেরুশালেম বালিয়ে দিয়েছিল| 9 তারপর তারা আরও কিছু কনানীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে নেমে গিয়েছিল| এরা নেগেভের পাহাড়ি অঞ্চলে আর পশ্চিম পাহাড়তলিতে বাস করত| 10 হিব্রোণে যে সব কনানীয়রা বাস করত তাদের সঙ্গেও যিহূদা যুদ্ধ করেছিল| (হিব্রোণকে বলা হত কিরিযত্ অর্ব|) তারা শেশয, অহীমান ও তলময নামে তিন জনকে পরাজিত করেছিল| 11 যিহূদার লোকরা সেখান থেকে চলে গেল| তারা দবীর শহরের লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল, যে শহরকে আগে বলা হত কিরিযত্-সেফর| 12 যুদ্ধের আগে কালেব যিহূদার লোকদের কাছে প্রতিশ্রুতি করে বলেছিল, “আমি কিরিযত্ সেফর আক্রমণ করতে চাই| যে এই শহরটি জিততে পারবে তার সঙ্গে আমি আমার কন্যা অক্ষারের বিবাহ দেব|” 13 কালেবের ছোট ভাইয়ের নাম ছিল কনস| কনসের পুত্র অত্নিয়েল কিরিযত্ সেফর দখল করল| সুতরাং কালেব অত্নিয়েলের সঙ্গে অক্ষার বিবাহ দিল| 14 অকষা অত্নিয়েলের ঘর করতে চলে গেল| অত্নিয়েল অক্ষাকে তার পিতার কাছ থেকে কিছু জমিজায়গা চাইবার জন্য বলেছিল| অক্ষা পিতার কাছে গেল| গাধার পিঠ থেকে যেই সে নেমেছে, অমনি কালেব জিজ্ঞাসা করল, “কি হয়েছে?” 15 অক্ষা বলল, “আমায় একটি উপহার দাও| তুমি আমাকে নেগেভের শুকনো মরুভূমিটা দিয়েছিলে| এবার আমাকে এমন কিছু জায়গা দাও যেখানে জল পাওয়া যায়|” কন্যার কথামত কালেব তাকে সেই দেশ দিল যার ওপরে নীচে জলের ঝর্ণা আছে| 16 কেনীয় সম্প্রদাযের লোকরা খেজুর গাছের শহর যেরিকো ছেড়ে যিহূদার লোকদের সঙ্গে য়িহুদা মরু অঞ্চলের দিকে চলে গেল| তারা অরাদ শহরের কাছে নেগেভের স্থায়ী বাসিন্দা হল| (কনানীয়রা মোশির শ্বশুরকুল থেকে এসেছিল|) 17 কিছু কনানীয়রা সফাত্ শহরে বাস করত| তাই সেখানেও যিহূদা আর শিমিয়োন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা কনানীয়দের আক্রমণ করল| তারা শহরটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলল এবং তার নাম রাখল হর্মা| 18 যিহূদার লোকরা ঘসা এবং ঘসার চারদিকের ছোটখাটো শহরগুলোও দখল করল| তারা অস্কিলোন, ইক্রোণ আর কাছাকাছি সব শহর দখল করল| 19 প্রভু যিহূদার য়োদ্ধাদের সহায় ছিলেন| পাহাড়ি দেশের জমিগুলো তারা নিয়ে নিল| কিন্তু উপত্যকা অঞ্চলের জমি তারা নিতে পারল না, কারণ সেখানকার অধিবাসীদের লোহার রথ ছিল| 20 মোশি কালেবকে হিব্রোণের কাছাকাছি জমি দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| সেই মত তার পরিবারকে সেই জমি দেওয়া হয়েছিল| কালেবের লোকরা অনাকের তিন পুত্রকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল| 21 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠী যিবূষীয়দের জেরুশালেম ছেড়ে যেতে জোর করে নি| তাই আজও জেরুশালেমে যিবূষীয়রা বিন্যামীনের লোকদের সঙ্গে বসবাস করছে| 22 য়োষেফের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা বৈথেল শহর আক্রমণ করতে গেল| (আগে বৈথেলের নাম ছিল লূস|) প্রভু য়োষেফের পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের সহায় ছিলেন| তারা য়োষেফের পরিবারের কয়েকজন গুপ্তচরকে বৈথেল শহরটা কিভাবে দখল করা যেতে পারে তা দেখবার জন্য পাঠালো| 23 24 গুপ্তচররা যখন বৈথেল শহরটা খুঁটিযে খুঁটিযে দেখছিল তখন তারা সেখান থেকে একটি লোককে বেরিয়ে আসতে দেখল| তারা লোকটিকে বলল, “শহরে ঢোকার গুপ্ত পথটা আমাদের দেখাও| আমরা শহর আক্রমণ করব, কিন্তু তুমি আমাদের সাহায্য করলে তোমাকে আমরা কিছু করব না|” 25 লোকটি শহরে প্রবেশের গুপ্তপথ দেখিয়ে দিল| য়োষেফের লোকরা তরবারি দিয়ে বৈথেলবাসীদের হত্যা করল| কিন্তু সাহায্যকারী ঐ লোকটিকে তারা কিছু করল না| লোকটির পরিবারকেও কিছু করল না| তাদের ছেড়ে দিল যাতে তারা যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারে| 26 লোকটি তখন হিত্তীয়দের দেশে চলে গেল এবং সেখানে একটি শহর তৈরী করল| শহরের নাম দিল লূস| আজও সেই শহরটি আছে| 27 কনানীয়রা বৈত্শান, তানক, দোর, য়িব্লিযম, মগিদ্দো এবং এদের চারপাশের ছোটছোট শহরগুলোতে বাস করত| মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা কনানীয়দের এসব জায়গা থেকে সরিয়ে দিতে পারেনি বলেই তারা সেখানে থাকতে পেরেছিল| তারা সেখান থেকে চলে যেতে চাযনি| 28 পরবর্তীকালে ইস্রায়েলীয়রা শক্তিশালী হয়ে উঠলে তারা কনানীয়দের ক্রীতদাস করে রাখে| তারা সমস্ত কনানীয়দের দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করতে পারল না| 29 ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীকে নিয়েও একই ব্যাপার ঘটেছিল| গেষরে থাকত কনানীয়রা| ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর লোকরা কনানীয়দের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেযনি| তাই তারা গেষরে ইফ্রয়িমদের সঙ্গে বসবাস করতে থাকল| 30 সবূলূন সম্পর্কেও সেই একই কথা| কিটরোণ আর নহলোল শহরে কিছু কনানীয় বাস করত| সবূলূন তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেযনি| তারা সবূলূনের সঙ্গেই থাকত| তবে তারা এদের ক্রীতদাস হয়েই থাকত| 31 আশের পরিবারগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল| তারা অন্যান্য জাতির লোকদের অক্কো, সীদোন, অহলব, অকষীব, হেল্বা, অফীক এবং রহোব শহর থেকে তাড়িয়ে দেয নি| 32 আশেরের লোকরা সেই জায়গায় কনানীয়দের তাড়িয়ে দেয নি| সুতরাং তারা কনানীয়দের মধ্যে বাস করত| 33 নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীও বৈত্-শেমশ এবং বৈত্-অনাতের থেকে লোকদের সরিয়ে দেয নি| তাই নপ্তালির লোকরা এসব শহরে লোকদের সঙ্গে বসবাস করতে লাগল| কনানীয়রা নপ্তালির লোকদের ক্রীতদাস হিসেবে থেকে গেল| 34 ইমোরীয় লোকরা দান পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের পাহাড়ী দেশে বাস করতে বাধ্য করল| দান পরিবারগোষ্ঠীর এই সব লোকরা পাহাড়ী জায়গায় বসবাস করতে বাধ্য হল, কারণ ইমোরীয়রা তাদের উপত্যকায় নেমে এসে বাস করতে দিল না| 35 ইমোরীয়রা ঠিক করল যে তারা হেরস পর্বতশৃঙ্গে, অযালোনে এবং শাল্বীমে থাকবে| পরবর্তীকালে য়োষেফের পরিবারগোষ্ঠী শক্তিশালী হয়ে উঠল| তখন তারা ইমোরীয়দের ক্রীতদাস করে রাখল| 36 ইমোরীয়দের দেশ অক্রব্বাম গিরিপথ থেকে সেলা পর্য়ন্ত এবং ওপরে সেলাকে ছাড়িযে পাহাড়ি দেশ আছে|
1 প্রভুর দূত গিল্গল শহর থেকে বোখীম শহরে গিয়েছিলেন| ইস্রায়েলবাসীদের কাছে দূত প্রভুর একটি বার্তা শুনিয়েছিলেন| বার্তাটি ছিল এরকম: “আমি তোমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছি| আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে জমিজায়গার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেইখানে আমি তোমাদের নিয়ে এসেছি| আমি বলেছিলাম, আমি কখনই তোমাদের কাছে চুক্তিভঙ্গ করব না| 2 কিন্তু তাই বলে তোমরা অবশ্যই সে দেশের লোকদের সঙ্গে কখনও কোন চুক্তি করবে না| তাদের তৈরী সমস্ত বেদী তোমাদের ভেঙ্গে ফেলতে হবে| একথা আমি তোমাদের আগেই বলেছি| কিন্তু তোমরা আমার কথা শোন নি| তোমরা করেছ কি? 3 “এখন আমি তোমাদের বলছি, “আমি এই জায়গা থেকে অন্যান্য লোকদের আর তাড়িয়ে দেব না| এরা তোমাদের কাছে সমস্যার সৃষ্টি করবে| এরা তোমাদের কাছে একটা ফাঁদের মতো হবে| তাদের ঐসব ভ্রান্ত দেবতারাই তোমাদের কাছে ফাঁদ হয়ে দাঁড়াবে|” 4 ইস্রায়েলবাসীদের কাছে প্রভুর দূত এই বার্তা ঘোষণা করার পর তারা সকলে উচ্চস্বরে কাঁদল| 5 যে জায়গায় তারা কাঁদছিল সেই জায়গার নাম দিল বোখীম| বোখীমে তারা প্রভুর উদ্দেশ্যে অনেক কিছু বলি উত্সর্গ করল| 6 যিহোশূয় তাদের যে যার নিজের জায়গায় চলে যেতে বলেছিলেন| সেই মত প্রত্যেক পরিবার নিজের নিজের জমির সীমার মধ্যে বসবাস করতে গেল| 7 যিহোশূয় যতদিন বেঁচ্ছেিলেন ততদিন ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুর সেবা করেছিল| য়িহোশূযের মৃত্যুর পর যে প্রবীণরা বেঁচ্ছেিলেন তাঁদের জীবনকালে তারা সমানে প্রভুর সেবা করেছিল| ইস্রায়েলের লোকদের জন্য প্রভু যা কিছু মহত্ কাজ করেছিলেন, এইসব প্রবীণরা তা দেখেছিলেন| 8 নূনের পুত্র প্রভুর সেবক যিহোশূয় 110 বছর বয়সে মারা গেলেন| 9 ইস্রায়েলবাসীরা যিহোশূয়কে তাঁর নিজের জমি গাশ পর্বতের উত্তরে ইফ্রয়িমের পাহাড়ী অঞ্চলে তিন্নত্-হেরসে কবর দিল| 10 ঐ সম্পূর্ণ প্রজন্মটি মারা যাবার পর পরবর্তী প্রজন্ম বেড়ে উঠল| তারা প্রভুকে জানত না| প্রভু ইস্রায়েলবাসীদের জন্য কি করেছেন তারা সেসব জানত না| 11 তাই তারা মন্দ কাজ করতে শুরু করল এবং বালের মূর্ত্তির পূজা করতে লাগল| তারা সেই সব কাজ করেছিল যেগুলো প্রভুর দ্বারা মন্দ হিসেবে বিবেচিত ছিল| 12 প্রভু ইস্রায়েলবাসীদের মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন| এদের পূর্বপুরুষরা প্রভুর সেবা করত| কিন্তু এখন তারা প্রভুকে ত্যাগ করল| তাদের চারিধারে বসবাসকারী লোকরা মূর্ত্তির পূজা করতে শুরু করল| এই কারণে প্রভু ক্রুদ্ধ হলেন| 13 ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে ত্যাগ করে বাল ও অষ্টারোতকে পূজা করতে লাগল| 14 প্রভু ইস্রায়েলবাসীদের উপর ক্রুদ্ধ ছিলেন তাই তিনি ইস্রায়েলবাসীদের শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হতে দিলেন| শত্রুরা ইস্রায়েলবাসীদের আক্রমণ করল এবং তাদের অধিকারের সব কিছু নিয়ে নিল| প্রভু তাদের ইস্রায়েলবাসীদের পরাস্ত করতে দিলেন যারা নিজেদের রক্ষা করতে অসমর্থ ছিল| 15 যখনই ইস্রায়েলীয়রা যুদ্ধ করত তারা হেরে যেত| কারণ প্রভু তাদের দিকে ছিলেন না| তিনি তো তাদের নিষেধ করে বলেছিলেন যে তাদের ঘিরে যে সব মানুষ রযেছে তাদের দেবতাদের পূজা করলে তারা হেরে যাবে| এর ফলে ইস্রায়েলীয়দের চরম দুর্দশা হল| 16 তখন প্রভু কয়েকজন নেতা ঠিক করলেন| এদের বলা হত বিচারক| শত্রুরা যারা ইস্রায়েলবাসীদের আক্রমণ এবং লুট করতো তাদের হাত থেকে এরা তাদের রক্ষা করতো| 17 কিন্তু তারা এই বিচারকদের কথা কানে নিত না| তারা প্রভুর প্রতি বিশ্বস্ত ছিল না এবং অন্যান্য দেবতাদের পূজা করতো| যদিও তাদের পূর্বপুরুষরা প্রভুর আজ্ঞা এবং নির্দেশ পালন করত, কিন্তু এখন তারা অচিরেই বিমুখ হয়ে গেল| তারা প্রভুকে মানতে চাইল না| 18 বারবার ইস্রায়েলের শত্রুরা তাদের ক্ষতি সাধন করত| আর তাই ইস্রায়েলীয়রা সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করত| প্রত্যেকবারই প্রভু তাদের দুর্দশায় কষ্ট পেয়ে তাদের বাঁচানোর জন্যে একজন করে বিচারক পাঠিয়েছিলেন| তিনি সবসমযেই এইসব বিচারকের সহায় ছিলেন| প্রত্যেকবার এদের সাহায্যেই ইস্রায়েলীয়রা রক্ষা পেত| 19 কিন্তু বিচারক মারা গেলেই তারা আবার তাদের পূরানো পথে ফিরে গিয়ে পাপ করত এবং মূর্ত্তি পূজায় মেতে উঠত| তারা ভীষণ একরোখা ছিল এবং তারা পাপের পথ ত্যাগ করতে অস্বীকার করল| তারা তাদের পূর্বপুরুষদের থেকেও খারাপ আচরণ করত| 20 তাই প্রভু ইস্রায়েলীয়দের ওপর ক্রুদ্ধ হলেন| তিনি বললেন, “এই দেশের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে আমি যে চুক্তি করেছিলাম এরা তা ভেঙ্গেছে| তারা আমার কথা শোনে নি| 21 তাই আমি আর অন্যান্য জাতিকে হারিযে ইস্রায়েলীয়দের পথ পরিষ্কার করব না| এই সব বিদেশী জাতি যিহোশূয়র মৃত্যুর সমযেও এই দেশে বসবাস করত| আমি তাদের এদেশেই থাকতে দেব| 22 ইস্রায়েলীয়দের পরীক্ষা করার জন্য আমি ঐ জাতিদের কাজে লাগাব| আমি দেখব ইস্রায়েলের লোকরা তাদের পূর্বপুরুষদের মতো প্রভুর আজ্ঞা মানে কি না|” 23 সেই কথামত প্রভু ইস্রায়েলে অন্যান্য জাতির লোকদের থাকতে দিলেন| তিনি তাদের এদেশ থেকে সঙ্গে সঙ্গে চলে যেতে বাধ্য করলেন না| তিনি যিহোশূয়র সৈন্যবাহিনীকে শত্রু দমন করতে সাহায্য করলেন না|
1 প্রভু ইস্রায়েল থেকে অন্যান্য জাতির সমস্ত লোকদের সরিয়ে দিলেন না| তিনি ইস্রায়েলীয়দের পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন| এই সময়, কোন ইস্রায়েলবাসী কনান দেশ দখল করতে কোন যুদ্ধ করে নি| প্রভু এদেশে অন্যান্য বিদেশীদের থাকতে অনুমতি দিয়েছিলেন| (যারা কনান দখলের যুদ্ধগুলিতে ভাগ নেযনি সেই ইস্রায়েলবাসীদের তিনি কেমন করে যুদ্ধ করতে হয় শিক্ষা দেবার জন্যই এরকম ব্যবস্থা করেছিলেন|) এদেশে তিনি যেসব জাতিকে থাকতে দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে ছিল: 2 3 পলেষ্টীয় সম্প্রদাযের পাঁচ জন শাসক, সমস্ত কনান জাতি, সীদোনীয লোকরা এবং হিব্বীয় লোকরা থাকত বাল্-হর্ম্মোণ পর্বত থেকে লেবো-হমাত পর্য়ন্ত ছড়ানো লিবানোনের পর্বতগুলিতে| 4 ইস্রায়েলবাসীদের পরীক্ষা করার জন্য প্রভু তাদের থাকতে দিয়েছিলেন| তারা তাঁর আদেশ পালন করে কি না তিনি তা দেখতে চেয়েছিলেন| মোশির মাধ্যমে প্রভু সেইসব আজ্ঞা তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন| 5 ইস্রায়েলের লোকরা কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয়, যিবূষীয় এবং ইমোরীয়দের সঙ্গে পাশাপাশি বাস করত| 6 তারা এইসব সম্প্রদাযের মেয়েদের বিয়ে করত| তাদের মেয়েরা তাদের ছেলেদের বিয়ে করতে শুরু করল| ইস্রায়েলীয়রা ঐ সমস্ত লোকদের দেবতাদের পূজা করতে শুরু করল| 7 প্রভুর দৃষ্টিতে ইস্রায়েলের লোকরা মন্দ কাজ করেছিল| তারা প্রভু, তাদের ঈশ্বরকে ভুলে গিয়ে বাল এবং আশেরার মূর্ত্তির পূজা করেছিল| 8 প্রভু তাদের ওপর ক্রুদ্ধ হলেন| তিনি অরাম নহরযিমের রাজা কূশন-রিশিযথযিমকে ইস্রায়েলীয়দের হারিযে তাদের শাসন করবার জন্য পাঠিয়ে ছিলেন| ইস্রায়েলীয়রা আট বছর সেই রাজার অধীনে ছিল| 9 কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য কাঁদল| তখন প্রভু কালেবের কনিষ্ট ভ্রাতা কনসের পুত্র অত্নীয়েলকে তাদের রক্ষার জন্য পাঠালেন| অত্নিয়েল ইস্রাযেলীযদের রক্ষা করলেন| 10 প্রভুর আত্মা অত্নীয়েলের ওপর এল| তিনি ইস্রায়েলীয়দের বিচারক হলেন| যুদ্ধে তাদের নেতৃত্ব দিলেন| প্রভুর সাহায্যে অত্নীয়েল অরামের রাজা কুশন-রিশিযাথযিমকে পরাজিত করলেন| 11 এরপর 40 বছর ধরে দেশে শান্তি বজায় ছিল| এই অবস্থা ছিল কনসের পুত্র অত্নীয়েলের মৃত্যু পর্য়ন্ত| 12 আবার ইস্রায়েলের লোকরা সেসব কাজ করল যা প্রভুর বিবেচনায মন্দ| সেইজন্য তিনি মোয়াবের রাজা ইগ্লোনকে ইস্রায়েলীয়দের পরাজিত করবার জন্য শক্তি দিলেন| 13 ইগ্লোন অম্মোন এবং অমালেক সম্প্রদাযের লোকদের কাছ থেকে সাহায্য পেল| তাদের নিয়ে ইগ্লোন ইস্রায়েলীয়দের আক্রমণ করল| ইগ্লোন তাদের হারিযে ‘খেজুর গাছের শহর’ বা জেরিকো থেকে তাড়িয়ে দিল| 14 মোয়াবের রাজা ইগ্লোন 18 বছর ধরে ইস্রায়েলীয়দের শাসন করেছিল| 15 ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর কাছে কেঁদে পড়ল| তিনি তখন তাদের বাঁচানোর জন্য এহূদ নামে একজন লোককে পাঠালেন| এহূদ ছিল বাঁহাতি| তার পিতার নাম ছিল গেরা, বিন্যামীন বংশীয় লোক| ইস্রায়েলবাসীরা মোয়াবের রাজা ইগ্লোনকে উপহার দেবার জন্য এহূদকে পাঠালেন| 16 এহূদ নিজের জন্য একটি তরবারি তৈরী করল| তরবারিটির দুদিকেই ধার ছিল আর সেটা ছিল প্রায় 18 ইঞ্চি লম্বা| এহূদ তরবারিটি ডানদিকের উরুতে বেঁধে তার পোশাকের নীচে লুকিয়ে রাখল| 17 তারপর সে মোয়াবের রাজা ইগ্লোনের কাছে এসে উপহার দিল| ইগ্লোন ছিল মোটাসোটা লোক| 18 উপহার দেবার পর এহূদ সঙ্গের লোকদের বাড়ী পাঠিয়ে দিল| এরা উপহার বয়ে নিয়ে তার সঙ্গে এসেছিল| 19 তারা রাজার প্রাসাদ ছেড়ে চলে গেল| এহূদ গিল্গল শহরে শিলা মূর্ত্তিগুলোর কাছ থেকে ফিরে এসে ইগ্লোনকে বলল, “রাজা তোমার জন্য একটা গোপন খবর আছে|”রাজা বলল “চুপ|” তারপর সে ঘর থেকে ভৃত্যদের সরিয়ে দিল| 20 এহূদ রাজা ইগ্লোনের কাছে এসেছিল| ইগ্লোন তখন গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদের উঁচুতলার একটা ঘরে একেবারে একা|তারপর এহূদ রাজাকে বলল, “তোমার জন্য ঈশ্বরের একটা বার্তা আছে|” শুনেই রাজা সিংহাসন থেকে উঠে এহূদের কাছ ঘেঁষে দাঁড়াল| 21 আর ঠিক এই সময় এহূদ বাঁ হাত দিয়ে ডান উরু থেকে তরবারি বের করে রাজার পেটে বিঁধিযে দিল| 22 রাজার পেটের ভেতর তরবারির বাঁট শুদ্ধ ঢুকে গেল| রাজার চর্বিতে সেটা পুরোপুরি ঢুকে গেল| এহূদ রাজার পেটেই তরবারিটা রেখে দিল| তরবারি বিদ্ধ হয়ে রাজা ইগ্লোন মলত্যাগের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিযে ফেলল এবং মল নির্গত হলো| 23 এহূদ ঘর থেকে বেরিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল| 24 এহূদ চলে যাবার পর ভৃত্যরা ফিরে এলো| তারা দেখল ঘরের দরজা বন্ধ| তাই তারা নিজেরা বলাবলি করল, “রাজা নিশ্চয়ই ঘরের মধ্যে মলমূত্র ত্যাগ করছেন|” 25 তারা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করল| কিন্তু রাজা উপরের ঘরের দরজা খুললেন না| এবং শেষ পর্য়ন্ত তারা ভয় পেয়ে গেল| চাবি নিয়ে তারা দরজা খুলে দেখল রাজা মেঝের উপর মরে পড়ে রযেছেন| 26 ভৃত্যরা যখন রাজার জন্য অপেক্ষা করছিল, তখন এহূদ পালিয়ে যাবার য়থেষ্ট সময় পেয়েছিল| সে মূর্ত্তিগুলোর পাশ দিয়ে যেতে যেতে সিযীরার দিকে পালিয়ে গেল| 27 সে সিযীরায পৌঁছে ইফ্রয়িমের পাহাড়ী অঞ্চলে গিয়ে শিঙা বাজাল| ইস্রায়েলবাসীরা শিঙার শব্দ শুনে পাহাড় থেকে নেমে এল| এহূদ তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল| 28 এহূদ বলল, “আমাকে অনুসরণ কর| প্রভু আমাদের শত্রু মোয়াবের লোকদের পরাজিত করতে শক্তি দিয়েছেন|”তাই ইস্রায়েলবাসীরা এহূদকে অনুসরণ করল| তারা সেইসব জায়গা দখল করল যেখান থেকে সহজেই যর্দন নদী পেরনো যায়| সেই সব জায়গা মোয়াবের দিকে গিয়েছে| তারা কাউকে যর্দন নদী পেরোতে দিল না| 29 তারা মোয়াবের 10,000 সাহসী ও শক্তিশালী লোককে হত্যা করল| তাদের কেউ পালাতে পারে নি| 30 সেদিন থেকে ইস্রায়েলীয়রা মোয়াবের লোকদের শাসন করতে লাগল| সে দেশে 80 বছর শান্তি ছিল| 31 এহূদের পর আরও একজন লোক ইস্রায়েলবাসীদের বাঁচিয়েছিল| তার নাম অনাতের পুত্র শম্গর| শম্গর একটা গরু তাড়ানোর লাঠি দিয়ে 600 জল পলেষ্টীয়কে হত্যা করেছিল|
1 এহূদের মৃত্যুর পর, লোকরা আবার যে সব কাজ প্রভুর বিবেচনায মন্দ তাই করলো| 2 তাই প্রভু কনানের রাজা যাবীনের কাছে ইস্রায়েলীয়দের পরাজিত হতে দিলেন| যাবীন হবোশত্ শহরে রাজত্ব করত| তার সৈন্যবাহিনীর প্রধান ছিল সীষরা| সীষরা হরোশত্ হাগোযিম শহরে বাস করত| 3 সীষরার 900 লোহার রথ ছিল| সীষরা 20 বছর ইস্রায়েলবাসীদের ওপর অত্যন্ত নিষ্ঠুর ছিল এবং সে তাদের উত্পীড়ন করেছিল| এর ফলে তারা সাহায্যের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল| 4 দবোরা নামের একজন ভাববাদিনী ছিলেন| তাঁর স্বামীর নাম ছিল লপ্পীদোত| সেই দবোরা ইস্রায়েলের বিচার করতেন| 5 একদিন দবোরা খেজুর গাছের নীচে বসে ছিলেন| এই খেজুর গাছের নাম দবোরার খেজুর গাছ| ইস্রায়েলের লোকরা তাঁর কাছে এল| সীষরাকে নিয়ে কি করা যায় সে বিষযে তারা তাঁর পরামর্শ চাইল| দবোবার খেজুর গাছটি ছিল ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে রামা আর বৈথেল শহরের মাঝখানে| 6 দবোরা বারক নামের একজন লোককে খবর পাঠালেন| তিনি তাকে দেখা করতে বললেন| বারক, অবীনোযমের পুত্র থাকে নপ্তালির কেদশ শহরে| বারক দেখা করতে এলে দবোরা তাকে বললেন, “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর তোমাকে আজ্ঞা দিচ্ছেন; ‘নপ্তালি এবং সবূলুন পরিবারগোষ্ঠীর 10,000 লোক জোগাড় কর এবং তাদের তাবোর পর্বতে নিয়ে যাও| 7 রাজা যাবীনের সেনাপতি সীষরা যাতে তোমার কাছে আসে আমি তার ব্যবস্থা করব| আমি তাকে তার রথ আর সৈন্যদল নিয়ে কীশোন নদীর ধারে পাঠিয়ে দেব| তারপর তোমাদের কাছে সে হেরে যাবে| এ ব্যাপারে আমি হব তোমাদের সহায়|”‘ 8 বারক দবোরাকে বলল, “আপনি আমার সঙ্গে গেলে যাব, যা বলবেন করব| কিন্তু আপনি না গেলে আমিও যাবো না|” 9 দবোরা বললেন, “আমি নিশ্চয়ই যাব|” কিন্তু তোমার মনোভাবের জন্য সীষরাকে পরাজিত করবার সম্মান তোমার হবে না| প্রভু একজন মহিলাকেই সীষরাকে পরাজিত করবার জন্য পাঠাবেন|দবোরা বারকের সঙ্গে কেদশ শহরে গেলেন| 10 কেদশে বারক সবূলূন এবং নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীকে ডেকে 10,000 লোককে জড়ো করে তার পেছন পেছন যেতে বললেন| দবোরাও বারকের সঙ্গে গেলেন| 11 এখন, হেবর নামে কেনীয় সম্প্রদাযের একটি লোক ছিল| সে অন্য কেনীয়দের ত্যাগ করেছিল| কেনীয়রা ছিল মোশির শ্বশুর হোবরের উত্তরপুরুষ| হেবর ওক গাছের পাশে সানন্নীম নামে একটি জায়গায় বাস করত| সানন্নীম কেদশ শহরের খুব কাছেই অবস্থিত| 12 সীষরাকে একজন খবর দিল, অবীনোযমের পুত্র বারক তাবোর পর্বতে রযেছে| 13 খবর শুনে সীষরা 900 লোহার রথ আর সমস্ত লোকদের নিয়ে হরোশত্ হাগোযিম শহর থেকে কীশোন নদীর দিকে রওনা হল| 14 দবোরা তখন বারককে বললেন, “আজ সীষরাকে পরাজিত করবার জন্য প্রভু তোমার সহায় হবেন| প্রভু যে ইতিমধ্যেই তোমার জন্য রাস্তা ফাঁকা করে দিয়েছেন তা তুমি নিশ্চয়ই জানো|” তাই বারক 10,000 লোক নিয়ে তাবোর পর্বত থেকে নেমে এল| 15 লোকজন নিয়ে বারক এবার সীষরাকে আক্রমণ করল| যুদ্ধের সময় প্রভু সীষরা আর তার রথ, লোকজন সবকিছুর মধ্যে একটা তালগোল পাকিযে দিলেন| লোকজন সব কি যে করবে বুঝতে পারছিল না| এই সুয়োগে বারক ও তার সৈন্যবাহিনী সীষরার বাহিনীকে হারিযে দিল| কিন্তু সীষরা রথ ফেলে দিয়ে পায়ে হেঁটে পালিয়ে গেল| 16 বারক যুদ্ধ চালিয়ে গেল| সে আর তার সৈন্যরা রথ আর বাহিনীকে হরোশত্ হাগোযিম পর্য়ন্ত তাড়িয়ে নিয়ে গেল| তারা সব লোককে তরবারি দিয়ে কেটে ফেলল| একজনও বেঁচে রইল না| 17 কিন্তু সীষরা পালিয়ে গেল| সে একটা তাঁবুতে এলো| সেই তাঁবুতে যাযেল নামে একজন স্ত্রীলোক বাস করত| তার স্বামীর নাম ছির হেবর| হেবর ছিল কেনীয় সম্প্রদাযের লোক| তার পরিবার হাত্সোরের রাজা যাবীনের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করত| সীষরা যাযেলের তাঁবুর দিকে ছুটে যাচ্ছিল| 18 সীষরাকে ছুটে আসতে দেখে যাযেল তার তাঁবু থেকে বেরিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলো| যাযেল সীষরাকে বলল, “আমার তাঁবুতে আসুন| কোন ভয় নেই|” সীষরা যাযেলের তাঁবুতে ঢুকলো| যাযেল একটা কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলো| 19 সীষরা বলল, “আমি তৃষ্ণার্ত| দয়া করে আমায় এক গ্লাস জল দিন|” একটা চামড়ার বোতলে যাযেল দুধ রাখত| সীষরাকে দুধ খাইযে যাযেল আবার তাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিল| 20 সীষরা যাযেলকে বলল, “তাঁবুর দরজার পাশে আপনি দাঁড়িয়ে থাকবেন| যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, “ভেতরে কেউ আছে কি না, বলবেন না কেউ নেই|”‘ 21 কিন্তু যাযেল তাঁবু খাটানোর একটা গোঁজ আর একটা হাতুড়ি পেয়ে গেল| তারপর চুপিচুপি সীষরার কাছে গেল| সীষরা খুবই ক্লান্ত ছিল, তাই সে ঘুমাচ্ছিল| যাযেল গোঁজটা সীষরার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে দিল| গোঁজটা তার মাথার মধ্যে ঢুকে বেরিয়ে এসে মাটিতে ঢুকে গেল| সীষরা মারা গেল| 22 আর ঠিক তখনই বারক সীষরার খোঁজে যাযেলের তাঁবুর কাছে এলো| যাযেল তাঁবুর বাইরে বেরিয়ে বারককে বলল, “ভেতরে আসুন| যাকে খুঁজছেন তাকে দেখাচ্ছি|” বারক যাযেলের সঙ্গে ভেতরে এল| দেখল সীষরা মরে মাটিতে পড়ে আছে| তার মাথার ভেতর গোঁজ ঢুকে আছে| 23 সেদিন ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের হয়ে কনানদের রাজা যাবীনকে পরাজিত করলেন| 24 ইস্রায়েলবাসীরা ক্রমে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠলো, যে পর্য়ন্ত না তারা কনানদের রাজা যাবীনকে পরাজিত করল| শেষে তারা যাবীনকে বিনষ্ট করল|
1 যেদিন ইস্রায়েলবাসীরা সীষরাকে পরাজিত করলো, সে দিন দবোরা আর অবীনোযমের পুত্র বারক এই গানটি গেয়েছিল: 2 ইস্রায়েলের লোকরা যুদ্ধের প্রস্তুতি করল| তারা স্বেচ্ছায যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে চাইল| প্রভুর নাম ধন্য হোক| 3 রাজারা সকলে শোন, শাসকরা মন দিয়ে শোন| আমি, আমিই প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাইব, ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও প্রভুর উদ্দেশ্যে গানটি গাইব| 4 হে প্রভু, তুমি সেয়ীর থেকে এসেছিলে| তোমার অভিযান ইদোম দেশ থেকে শুরু হয়েছিল| তোমার পদপাতে কেঁপে উঠেছিল পৃথিবী| আকাশ থেকে অঝোরে বৃষ্টি পড়ছিল| মেঘরা ঝরিযে ছিল জল| 5 প্রভু, সীনয় পর্বতের ঈশ্বরের সামনে, প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সামনে পর্বতমালা কেঁপে উঠেছিল| 6 অনাতের পুত্র শম্গর এবং যাযেলের সমযে সমস্ত রাজপথ জনমানবহীন| বণিকরা এবং পথিকরা অন্য পথ দিয়ে যাতাযাত করত| 7 সেখানে কোন সৈন্য ছিল না| দবোরা যতদিন তুমি ইস্রায়েলের মা হয়ে আসো নি ততদিন ইস্রায়েলে কোন সৈন্য ছিল না| 8 ঈশ্বর নতুন নেতাদের নির্বাচন করেছিলেন| তারা নগরের প্রবেশদ্বারে যুদ্ধে রত ছিল| ইস্রায়েলে 40,000 সৈন্য ছিল| তাদের মধ্যে কেউ একটাও ঢাল অথবা বর্শা খুঁজে পায় নি| 9 আমার হৃদয় ইস্রায়েলের সেই সেনাপতিদের সঙ্গে রযেছে, যারা স্বেচ্ছায যুদ্ধে গিয়েছিল| প্রভুর নাম ধন্য হোক| 10 তোমরা যারা সাদা গর্দভের পিঠে চড়ে কম্বলের জিনে বসে আছো এবং যারা রাস্তায় হাঁটো, তারা এ সম্বন্ধে গান কর| 11 পশুরা যেখানে জল পান করে সেই চৌবাচ্চায শুনি রণদামামার মহাসঙ্গীত ধ্বনি| লোকরা গায প্রভুর বিজয়গীতি, ইস্রায়েলে তাঁর সৈন্যের জয় গৌরব গীতি যখন তাঁরই বাহিনী নগরদ্বারে করেছে যুদ্ধ আর তাদেরই কেবল শোন জয় জয়কার| 12 জাগো হে মা দবোরা, জেগে ওঠো, গাও গান! বারক তুমিও জাগো| হে অবীনোযমের পুত্র তোমার শত্রুদিগকে বন্দী করো| 13 তারপর তিনি ইস্রায়েলে যারা বেঁচে আছে তাদের শক্তিমান লোকদের বিজয়ী করলেন| প্রভু আমায় য়োদ্ধাদের ওপর শাসন করতে দিলেন| 14 অমালেকদের পাহাড়ী দেশ হতে ইফ্রয়িমের লোকরা এসেছিল| হে বিন্যামীন, তারা তোমায় ও তোমার লোকদের এবং মাখীর পরিবার থেকে আসা অধ্যক্ষগণকে অনুসরণ করেছিল| হে সবূলূন তোমার নেতারা সেনাপতির দণ্ড নিয়ে এসেছিল| 15 ইষাখরের নেতারা দবোরার সঙ্গে ছিল| ইষাখরের লোকরা বারকের প্রতি বিশ্বস্ত ছিল| দেখ, ঐ লোকরা কুচকাওযাজ করে উপত্যকায নামছে| রূবেণ, তোমার সেনাদলে প্রচুর সাহসী সৈন্য আছে| 16 তবে কেন তোমাদের মেষপালের আশেপাশে বসে রয়েছ? রূবেণ তোমার সাহসী সেনারা যুদ্ধ সম্পর্কে এত চিন্তা করেছিল| তবু কেন তারা বাড়ীতে বসে মেষপালকের বাঁশীর বাজনা শোনে? 17 যর্দন নদীর ওপারে গিলিয়দবাসী তাঁবুতেই বসে ছিল| এবং তোমার দান এর লোকরা, কেন জাহাজের আশেপাশে বসেছিল? আশের গোষ্ঠী সাগরের তীরে নিরাপদ বন্দরে মনের মতন করে তাঁবু গেড়েছিল| 18 কিন্তু সমস্ত সবূলূনবাসী, নপ্তালি অধিবাসী পাহাড়ের গায়ে জীবনের বাজী রেখে প্রত্যেকে মহাসংগ্রামে মেতেছিল| 19 কনানের রাজারা যুদ্ধে এলেন, তানক শহরে মগিদ্দোর জলের ধারে যুদ্ধ চলল, তবু কোন সম্পদ না নিয়ে তাঁরা ঘরে ফিরলেন| 20 আকাশের যত তারা, নিজ নিজ পথ হতে মেতেছিল যুদ্ধে সেদিন সীষরার বিরুদ্ধে| 21 প্রাচীন কালের কীশন নদী সীষরার সৈন্যবাহিনীকে ভাসিযে নিয়ে গিয়েছিল| হে আমার আত্মা, শক্তির সঙ্গে বেরিয়ে এস| 22 অশ্ব ক্ষুরের আঘাতে মাটি কেঁপে ওঠে| সীষরার পরাক্রমী অশ্বরা সব ছুটে যাও, ছুটে যাও| 23 প্রভুর দূত বলল, “মেরোস শহরকে অভিশাপ দাও| তার শহরবাসীদের অভিশাপ দাও| কারণ তারা সৈন্যবাহিনী নিয়ে প্রভুকে সাহায্য করতে আসে নি|” 24 কেনীয় হেবরের পত্নী - যাযেল তার নাম| সর্বোত্তমা মহীযসী নারী, প্রণাম তারে প্রণাম| 25 সীষরা চাইল জল; জল নয়, যাযেল তাকে দুধের পাত্র এগিয়ে দিল| রাজারই পক্ষে মানায তেমন পাত্র| তাতে ক্ষীর ননী সাজিযে দিল যাযেল| 26 যাযেল তার হাত বাড়ালো, তাঁবু খাটানোর গোঁজ হাতে পেলো| ডান হাত বাড়ালে কর্মকারের হাতুড়ি উঠে এলো| তারপর সে সীষরার মস্তকে আঘাত হানল| সে হাতুড়ির আঘাতে তার কপালের দুই পাশের মধ্য দিয়ে একটা ছিদ্র করল| 27 যাযেলের পায়ে মাথা গুঁজে দিয়ে পড়ে গেল সীষরা| ভূতলশাযিত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল এক চরম বিপর্য়য| 28 সীষরার মা জানালা থেকে উঁকি দেয| সীষরার মা পর্দা সরিয়ে তাকায আর কাঁদে, “সীষরার রথ ফিরতে দেরী করে কেন? কেন আমি এখন অবধি তার মালগাড়ীর শব্দ শুনছি না?” 29 তার প্রজ্ঞাবতী দাসী উত্তর দিল, ব্যাকুলা মাযের দেখ এই দুর্গতি| 30 দাসীটি বলল, “আমি নিশ্চিত তারা যুদ্ধে জিতেছে, এবং এখন তারা তাদের লুটের প্রচুর দ্রব্যসামগ্রী নিজেদের মধ্যে ভাগ করছে| প্রত্যেক সৈন্য নেবে দু একটি করে রমণী এবং বিজয়ী সীষরা হয়তো পরবার জন্য দু-একটি রঙীন সুতোর কাজ করা পোশাক পাবে|” 31 ওগো প্রভু, যেন এভাবেই মরে তোমার শত্রুরা| যারা তোমায় ভালবাসে তারা যেন প্রভাত সূর্য়সম শক্তি অর্জন করে|এইভাবেই 40 বছর সে দেশে শান্তি বিরাজ করছিল|
1 আবার ইস্রায়েলবাসীরা পাপ কর্মে মেতে উঠল| তাই সাত বছর ধরে প্রভু মিদিয়নদের সহায় হয়ে রইলেন যাতে তারা ইস্রায়েলীয়দের দমিযে রাখতে পারে| 2 মিদিয়ন সম্প্রদাযের লোকরা ছিল ভীষণ শক্তিশালী| ইস্রায়েলবাসীদের ওপর তারা বেশ অত্যাচার করত| তাই ইস্রায়েলীয়রা পর্বতের নানা গোপন জায়গায় লুকিয়ে থাকত| সেখানেই খাবার দাবার লুকিয়ে রাখত| সেসব জায়গা খুঁজে পাওয়া খুব শক্ত ছিল| 3 তারা যে এরকম সাবধান হয়ে গিয়েছিল তার কারণ মিদিয়নীয় এবং অমালেকীয় সম্প্রদাযের লোকরা পূর্বদেশ থেকে সবসময় আক্রমণ করতো এবং তাদের ফসল নষ্ট করতো| 4 আক্রমণকারীরা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শিবির গেড়েছিল| তারা অনেক দূরে ঘসা শহর পর্য়ন্ত ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত শস্য নষ্ট করে দিয়েছিল| তারা ইস্রায়েলীয়দের খাবার মতো কিছুই অবশিষ্ট রাখল না| তারা তাদের মেষ, গরু, গাধা এসবও কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল| 5 মিদিযনী়রা ওদের দেশে তাঁবু গেড়েছিল এবং সঙ্গে এনেছিল পরিবারের লোকজন, জীবজন্তু| পঙ্গপালের ঝাঁকের মতো অগুনতি মানুষ তারা এবং তাদের আনা উটের সংখ্যা গোণা অসম্ভব ছিল| দেশটাকে ওরা একেবারে ছারখার করে দিল| 6 মিদিযনী়দের অত্যাচারে ইস্রায়েলীয়রা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেল| তাই তারা প্রভুর দয়া পাবার জন্যে কেঁদে আকুল হয়ে উঠল| 7 মিদিযনের লোকরা অত্যাচারে মেতে উঠেছিল| সেই জন্যে ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর কৃপার জন্যে কেঁদে আকুল হয়ে উঠল| 8 তাই প্রভু তাদের কাছে একজন ভাববাদীকে পাঠালেন| ভাববাদী ইস্রায়েলবাসীদের বললেন, “প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর কি বলেন তা শোন| তিনি বলেছেন, ‘মিশরে তোমরা ক্রীতদাস ছিলে| আমি তোমাদের মুক্ত করে সেই দেশ থেকে নিয়ে এসেছি| 9 আমি তোমাদের মিশরের এবং যারা তোমাদের নির্য়াতন করেছে, তাদের সকলের হাত থেকে রক্ষা করেছি| আমি আবার সেই লোকদের তাড়িয়ে বের করে দিয়েছি এবং তাদের দেশ তোমাদের দিয়েছি|’ 10 তারপর আমি তোমাদের বলেছিলাম, ‘আমি তোমাদের প্রভু ঈশ্বর| তোমরা ইমোরীয়দের দেশে বসবাস করবে বটে, কিন্তু কখনই তোমরা তাদের মূর্ত্তির পূজা করবে না| কিন্তু তোমরা আমার কথা শোনো নি|” 11 সেই সময়, প্রভুর দূত একজন লোকর কাছে এলেন| তার নাম ছিল গিদিয়োন| প্রভুর দূত অফ্রা নামক একটি জায়গায় একটি ওক গাছের নীচে বসলেন| ওক গাছটা ছিল য়োয়াশ নামে একজন লোকর| য়োয়াশ, গিদিয়োনের পিতা, অবীযেষ্রীয বংশের লোক ছিলেন| গিদিয়োন একটি দ্রাক্ষা মাড়াবার জায়গায় কিছু গম মাড়াই করছিলেন| প্রভুর দূত গিদিয়োনের কাছে বসলেন| গিদিয়োন লুকিয়েছিলেন যাতে মিদিয়নরা তাঁকে দেখতে না পায়| 12 প্রভুর দূত গিদিয়োনের সামনে দেখা দিয়ে তাকে বললেন, “হে মহাসৈনিক প্রভু তোমার সহায়!” 13 গিদিয়োন বললেন, “মহাশয় আপনাকে একটা কথা বলব| প্রভু যদি সত্যিই আমাদের সহায়, তাহলে এত দুঃখ কষ্ট কেন? আমি শুনেছি আমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য তিনি অনেক আশ্চর্য়্য় কাজ করেছিলেন| তাঁরা বলেছিলেন যে প্রভু তাঁদের মিশর থেকে সরিয়ে এনেছিলেন| কিন্তু তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন| কেবলমাত্র প্রভুর জন্যই মিদিয়নরা আমাদের পরাজিত করতে পেরেছে|” 14 প্রভু গিদিয়োনের দিকে ফিরে বললেন, “তোমার নিজের শক্তিকে কাজে লাগাও| যাও, মিদিযনের হাত থেকে ইস্রায়েলবাসীদের রক্ষা করো| এ কাজে আমি তোমাকেই পাঠাচ্ছি|” 15 গিদিয়োন বলল, “ক্ষমা করবেন| কি করে আমি ইস্রায়েলকে রক্ষা করব? মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে আমার পরিবারই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্বল| তাছাড়া এই পরিবারে আমিই সবচেয়ে ছোট|” 16 প্রভু বললেন, “আমি তোমার সঙ্গে আছি| সুতরাং মিদিয়নদের তুমি সহজেই পরাজিত করতে পারবে| এতই সহজ যে, মনে হবে তুমি যেন শুধু একজনের সঙ্গেই যুদ্ধ করছ|” 17 তখন গিদিয়োন প্রভুকে বলল, “যদি আপনি সত্যিই আমার ওপর প্রসন্ন হন তাহলে আপনি যে বয়ং প্রভু তার একটা প্রমাণ দিন| 18 দয়া করে একটু অপেক্ষা করুন| আমি ফিরে না আসা পর্য়ন্ত যেন চলে যাবেন না| আমি আপনার জন্য নৈবেদ্য আনতে যাচ্ছি| সেই নৈবেদ্য আপনার কাছে নিবেদন করব| আপনি দয়া করে অনুমতি দিন|”প্রভু বললেন, “আমি তোমার ফিরে আসা পর্য়ন্ত অপেক্ষা করবো|” 19 গিদিয়োন ভেতরে গিয়ে একটি কচি পাঁঠা গরম জলে ফোটালো| তাছাড়া সে প্রায় 20 পাউণ্ড মযদা দিয়ে খামিরবিহীন রুটি তৈরী করালো| তারপর মাংসটা সে একটা ঝুড়িতে আর ঝোলটা একটা পাত্রে রাখলো| সে মাংস, ঝোল আর রুটি নিয়ে ওক গাছের নীচে প্রভুকে পরিবেশন করল| 20 প্রভুর দূত গিদিয়োনকে বললেন, “মাংস, রুটি ঐখানে পাথরের ওপর রাখো| ঝোলটা ঢেলে দাও|” গিদিয়োন তাই করলো| 21 প্রভুর দূতের হাতে একটি ছড়ি ছিল| মাংস আর রুটির ওপর ছড়িটার ডগা ছোঁযাতেই পাথর থেকে আগুন ছিটকে বেরল| মাংস রুটি একেবারে পুড়ে গেল| তারপর প্রভুর দূত কোথায মিলিযে গেলেন| 22 তখন গিদিয়োন বুঝতে পারলেন যে তিনি এতক্ষণ প্রভুর দূতের সঙ্গেই কথা বলছিলেন| গিদিয়োন চেঁচিয়ে উঠল, “সর্বশক্তিমান প্রভু! আমি প্রভুর দূতকে মুখোমুখি দেখেছি|” 23 প্রভু বললেন, “শান্ত হও! এর জন্য ভয় পেও না, তুমি মরবে না!” 24 অতঃপর গিদিয়োন সেই জায়গায় প্রভুর উপাসনার জন্য একটি বেদী তৈরী করলেন| সে বেদীর নাম দিলেন, “প্রভুই শান্তি|” অফ্রা শহরে সেই বেদী আজও রযেছে| এখানেই অবীযেষ্রীযদের বংশের লোকরা বসবাস করে| 25 সেই রাত্রেই প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “তোমার পিতার একটা সাত বছরের বেশ শক্তসমর্থ ষাঁড় আছে, তাকে সঙ্গে নাও| বালের মূর্ত্তি পূজার জন্য একটি বেদী আছে যেটা তোমার পিতা তৈরী করেছিলেন| বেদীর পাশে একটা কাঠের খুঁটি রযেছে| খুঁটিটা আশেরার মূর্ত্তিকে পূজা করার জন্য| এবার ঐ ষাঁড়টিকে কাজে লাগাও, যাতে সে ঐ বালের বেদী, আশেরার খুঁটি ভেঙ্গে ফেলতে পারে| 26 ভাঙ্গার পর তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের জন্য উপযুক্ত বেদী তৈরী করো| এই উঁচু জায়গাতেই সেটা তৈরি করো| তারপর এই বেদীতেই ঐ ষাঁড়টিকে বলি দিয়ে পুড়িয়ে দাও| জ্বালানোর জন্য আশেরার খুঁটিটাকে ব্যবহার করো| 27 গিদিয়োন প্রভুর কথামতো দশ জন ভৃত্য নিয়ে কাজটি করলেন| কিন্তু তাঁর মনে ভয় হল যে, বাড়ির লোকরা আর শহরের সবাই তাঁর কাণ্ড দেখে ফেলবে| অথচ প্রভুর নির্দেশ তাঁকে পালন করতেই হবে| কাজটা তিনি দিনের বেলায নয়, রাত্রিতেই করলেন| 28 পরদিন সকালে শহরের লোকরা ঘুম থেকে উঠে দেখল, বালের বেদীটা শেষ হয়ে গেছে| তারা এটাও দেখল যে আশেরার খুঁটিও কেটে ফেলা হয়েছে| বালের বেদীর পাশেই ছিল সেই খুঁটি| সেই সঙ্গে তারা দেখলো গিদিয়োনের তৈরি সেই বেদীটা| বেদীর উপর বলি দেওয়া ষাঁড়টিও তাদের চোখে পড়লো| 29 লোকরা এ ওর দিকে তাকিযে জিজ্ঞাসা করল, “কে আমাদের বেদীটা ভেঙ্গেছে? কে আশেরার খুঁটি কেটেছে? কে এই নতুন বেদীটায ষাঁড় বলি দিয়েছে?” এই রকম নানা প্রশ্ন তারা নিজেদের মধ্যে করতে থাকল|একজন বলল, “যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন এসব করেছে|” 30 তারা যোয়াশের কাছে এল| তারা তাঁকে বলল, “তোমার পুত্রকে নিয়ে এসো| সে বালের বেদী ভেঙ্গেছে| সেই বেদীর পাশে আশেরার খুঁটি সে কেটে ফেলেছে| তার মরণ কেউ ঠেকাতে পারবে না| তাকে মরতে হবেই|” 31 ঘিরে থাকা লোকদের সামনে য়োয়াশ বলল, “তোমরা কি বালের পক্ষ নিতে যাচ্ছ? তোমরা কি বালকে রক্ষা করতে যাচ্ছ? যদি কেউ তার পক্ষ নাও তাহলে কাল সকালের মধ্যেই তাকে মরতে হবে| বাল যদি সত্যিই দেবতা হয় তাহলে যে তার বেদী ভেঙ্গেছে তার বিরুদ্ধে সে নিজেকে রক্ষা করুক|” 32 য়োয়াশ বলল, “যদি গিদিয়োন বালের বেদী ভেঙ্গে থাকে তবে বাল তার সঙ্গে বিবাদ করুক|” সেদিন থেকে য়োয়াশ গিদিয়োনের একটা নতুন নাম দিলেন| যিরুব্বাল হচ্ছে সেই নতুন নাম| 33 মিদিয়নীয়, অমালেকীয় এবং পুর্বদেশের অন্যান্য লোকরা একসঙ্গে মিলে ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল| যর্দন নদী পেরিযে তারা য়িষ্রিযেল উপত্যকায শিবির গাড়ল| 34 প্রভুর আত্মা গিদিয়োনের ওপর ভর করলেন| তিনি তাকে প্রচণ্ড শক্তি দিলেন| গিদিয়োন অবীযেষ্রীয পরিবারকে আহ্বান করার জন্য শিঙা বাজাল| 35 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী সকলের কাছে সে বার্তাবাহক পাঠাল| বার্তাবাহকরা তাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধের জন্য তৈরি হতে বলল| তাছাড়া গিদিয়োন আশের, সবুলূন আর নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীর কাছেও বার্তাবাহক পাঠালেন| এই কথা বার্তাবাহকরা তাদের বললে তারাও গিদিয়োন ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে দেখা করলো| 36 তখন গিদিয়োন ঈশ্বরকে বললেন, “ আপনি আমাকে সাহায্য করবেন বলেছিলেন যাতে ইস্রায়েলবাসীরা রক্ষা পায়| এ কথা যে সত্যি তা প্রমাণ করুন| 37 যে জায়গায় শস্য ঝাড়াই হয় সেখানে আমি একটা মেষের ছাল রেখে দেব| যদি দেখি সব জায়গাই শুকনো অথচ সেই মেষের ছালে শিশির পড়েছে তাহলে বুঝব আপনি আমাকে দিয়ে ইস্রায়েল রক্ষা করবেন| এরকম কথাই তো আপনি বলেছিলেন|” 38 ঠিক সে রকমই ঘটল| পরদিন খুব ভোরে গিদিয়োন ঘুম থেকে উঠে মেষের ছাল নিংড়ে নিলে ছাল থেকে এক বাটি ভর্তি জল বের হল| 39 গিদিয়োন ঈশ্বরকে বলল, “হে প্রভু আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন না| আমি আপনার কাছে শুধু আর একটি জিনিস চাইব| মেষের ছাল নিয়ে আর একবার আপনাকে পরীক্ষা করতে দিন| এবারে ছালটা যেন শুকিয়ে যায় আর চারিদিকের মাটি যেন শিশিরে ভিজে থাকে|” 40 সেদিন রাত্রে ঈশ্বর সে রকমই করলেন| মেষের ছালটাই শুধু শুকিয়ে গেলো আর চারপাশের সমস্ত মাটি শিশিরে শিশিরে ভেজা ভেজা হয়ে রইল|
1 ভোরবেলা যিরুব্বাল (গিদিয়োন) তার লোকজন নিয়ে হারোদ ঝর্ণার কাছে শিবির স্থাপন করলেন| মিদিযোনের লোকরা মোরি পর্বতের নীচে উপত্যকায তাঁবু খাটাল| জায়গাটা ছিল গিদিয়োনদের শিবিরের উত্তর দিকে| 2 তখন প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “মিদিযনের লোকদের হারাবার জন্য আমি তোমার লোকদের সাহায্য করতে যাচ্ছি| কিন্তু এই কাজের পক্ষে তোমার লোকজন অনেক বেশী| ইস্রায়েলীয়রাও আমাকে ভুলে থাকুক, আর বড়াই করে বলুক যে, তারা নিজেরাই নিজেদের বাঁচিয়েছে - তা আমি চাই না| 3 সেই জন্য এখন তাদের কাছে জানিয়ে দাও, ‘যে ভীতু সে গিলিয়দ পর্বত থেকে চলে যেতে পারে| সে বাড়ি ফিরে যেতে পারে|”‘তখন 22,000 লোক গিদিয়োনকে ফেলে রেখে ঘরে ফিরে গিয়েছিল| 10,000 লোক অবশ্য তখনও থেকে গেল| 4 তারপর প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “তবুও তোমার সঙ্গে অনেক বেশী লোক রযেছে| তাদের জলের দিকে নিয়ে যাও, তোমার হয়ে আমি সেখানে তাদের পরীক্ষা করব| আমি যখন বলব, ‘এই লোকটা তোমার সঙ্গে যাবে,’ তখন সে যাবে| আবার যখন বলব, ‘ঐ লোকটা যাবে না,’ তখন সে যাবে না|” 5 সেই মতো গিদিয়োন লোকগুলোকে জলের দিকে নিয়ে গেলেন| সেই জলের কাছে প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “এইভাবে লোকগুলোকে আলাদা আলাদা করো: যারা কুকুরের মতো জিভ দিয়ে চুক্চুক্ করে জল পান করবে তারা হবে এক গোষ্ঠী, আর যারা মাথা নীচু করে জল পান করবে তারা হবে অন্য একটি গোষ্ঠী|” 6 তিনশো জন লোক হাত দিয়ে মুখের কাছে জল নিয়ে কুকুরের মত চুক্চুক্ করে জল পান করল| অন্যান্যরা পান করল মাথা হেঁট করে| 7 প্রভু গিদিয়োনকে বললেন, “মিদিয়নীয়দের পরাজিত করতে আমি ঐ 300 জন লোককে কাজে লাগাবো| যারা কুকুরের মত চুক্চুক্ করে জল পান করেছিল| আমি তাদের দ্বারাই ইস্রায়েলকে রক্ষা করব| বাকি লোকরা বাড়ি চলে যাক|” 8 সেই মতো গিদিয়োন 300 জন লোককে নিজের কাছে রেখে বাদ বাকি ইস্রায়েলীয়দের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন| সেই 300 জন লোক যারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল সেই সব লোকদের সরবরাহকৃত জিনিসপত্র এবং শিঙাগুলো রেখে দিল|মিদিযনের লোকরা গিদিয়োনের তাঁবুর নীচে উপত্যকায তাঁবু গেড়েছিল| 9 রাত্রে প্রভু গিদিয়োনের সঙ্গে কথা বললেন| তিনি বললেন, “ওঠো! আমি তোমাকে মিদিয়ন সৈন্যবাহিনীকে পরাজিত করতে দেবো| তাদের তাঁবুর দিকে নেমে যাও| 10 যদি একা যেতে ভয় পাও তাহলে তোমার ভৃত্য ফুরাকে সঙ্গে নাও| 11 মিদিয়নদের শিবিরের লোকরা কি সব বলছে তোমরা তা শুনবে| এসব শোনার পর তোমরা আক্রমণ করতে আর ভয় পাবে না|”তাই গিদিয়োন আর তার ভৃত্য ফুরা শত্রুপক্ষের শিবিরের একেবারে সীমানার দিকে চলে গেলেন| 12 মিদিয়ন, অমালেক আর পূর্ব দেশের লোকরা সেই উপত্যকায তাঁবু ফেলল| এত লোকজন যে দেখে মনে হোত পঙ্গপালের ঝাঁক| আর তাদের এত উট যে মনে হোত তারা যেন সমুদ্রের ধারের অংসখ্য় বালির কণা| 13 গিদিয়োন শত্রু শিবিরে এলেন| তিনি শুনতে পেলেন একজন ব্যক্তি তার বন্ধুকে একটা স্বপ্নের কথা বলছে| লোকটা বলছে, “আমি স্বপ্ন দেখলাম একটা গোল রুটি মিদিয়নদের তাঁবুর ওপর নেমে এসে এত জোরে ধাক্কা দিল যে তাঁবু উল্টে গিয়ে ধুলোয লুটিযে গেল|” 14 বন্ধুটি স্বপ্নের অর্থ বুঝতে পারল| সে বলল, “তোমার স্বপ্নের একটিই অর্থ হয়| স্বপ্নটি হচ্ছে ইস্রায়েলের সেই পুরুষটিকে নিয়ে| তার নাম যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন| অর্থাত্ মিদিযনের সৈন্যবাহিনীকে পরাজিত করার জন্য ঈশ্বর গিদিয়োনকে পাঠিয়েছেন|” 15 গিদিয়োন তাদের স্বপ্ন নিয়ে কথাবার্তা শুনলে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে মাথা নুইযে প্রণাম জানালেন| তারপর ইস্রায়েলীয়দের তাঁবুতে ফিরে গিয়ে তাদের বললেন, “ওঠ! মিদিয়নদের পরাজিত করতে প্রভু আমাদের সাহায্য করবেন|” 16 গিদিয়োন 300 জন লোককে তিনটি দলে ভাগ করে দিলেন| প্রত্যেককে একটি করে শিঙা আর খালি ঘট দিলেন| ঘটের মধ্যে ছিল একটা করে জ্বলন্ত মশাল| 17 তারপর গিদিয়োন বললেন, “তোমরা আমাকে লক্ষ্য করবে| আমি যা করি তোমরা তাই করবে| তোমরা আমার পেছনে পেছনে শত্রু শিবিরের সীমানার কাছে চলে আসবে| ওখানে গিয়ে আমি যা করব তোমরাও ঠিক তাই করবে| 18 শত্রু শিবিরগুলো তোমরা ঘিরে ফেলবে| আমার সঙ্গে যারা আছে তাদের নিয়ে আমরা শিঙা বাজাব| তখন তোমরাও শিঙা বাজাবে| তারপর চিত্কার করে বলে উঠবে: ‘জয় প্রভুর জন্য ও গিদিয়োনের জন্য!”‘ 19 গিদিয়োন 100 জন লোক নিয়ে শত্রু শিবিরের সীমানায পৌঁছলেন| ওখানে প্রহরীদের পালা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই তারা এসে পড়ল| রাত্রির মাঝামাঝি পাহারাদারির সময় তারা হানা দিল| গিদিয়োন ও তাঁর লোকরা শিঙা বাজাবার পর ঘটগুলো ভেঙ্গে ফেলল| 20 তারপর গিদিয়োনের তিনটি বাহিনীর সকলেই শিঙা বাজিযে দিয়ে ঘটগুলি ভেঙ্গে দিলো| লোকরা বাঁহাতে মশালগুলো আর ডানহাতে শিঙা ধরেছিল| শিঙা বাজাতে বাজাতে তারা ধ্বনি দিল: “প্রভুর তরবারি, গিদিয়োনের তরবারি!” 21 গিদিয়োনের লোকরা যেখানে ছিল, সেখানেই রইল| কিন্তু তাঁবুর ভেতরে মিদিযনের লোকরা চিত্কার করতে করতে পালাতে লাগল| 22 যখন 300 জন লোক শিঙা বাজাল, প্রভু মিদিযনের লোকদের পরস্পরকে তরবারি দিয়ে হত্যা করালেন| শত্রু সৈন্যরা বৈত্-শিট্ট নগরের দিকে পালাতে লাগল| বৈত্-শিট্টা সরোরা নগরের কাছাকাছি ছিল| লোকগুলো দৌড়াতে দৌড়াতে একেবারে টব্বতের শহরের কাছে আবেল-মহোলা শহরের সীমানা পর্য়ন্ত চলে এল| 23 তারপর নপ্তালি, আশের এবং মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর সবাইকে বলা হল মিদিয়নদের হঠিযে দেবার জন্যে| 24 ইফ্রয়িমের পাহাড়ে দেশগুলোয গিদিয়োন দূত পাঠিয়ে দিলেন| দূতরা বলল, “তোমরা নেমে এসো| মিদিয়নদের আক্রমণ করো| বৈত্-বারা আর যর্দন নদী পর্য়ন্ত যে নদী চলে গেছে তোমরা তার দখল নাও| মিদিয়নরা সেখানে যাবার আগেই এই কাজটা তোমরা করে নাও|”এইভাবে ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর সবাইকে দূতরা আহ্বান করল| যে নদী বৈত্-বারা পর্য়ন্ত বয়ে গেছে সেই নদী তারা অধিকার করল| 25 ইফ্রয়িমের লোকরা দুজন মিদিয়ন নেতাকে ধরল| এদের নাম ওরেব আর সেব| তারা ওরেবকে “ওরেবের শিলা” নামে এক জায়গাতে হত্যা করল| সেবকে হত্যা করল সেবের দ্রাক্ষা মাড়াই ক্ষেত্রে| ইফ্রয়িমের লোকরা মিদিয়নদের তাড়িয়ে দেবার কাজ চালিয়ে গেল| প্রথমে তারা ওরেব আর সেবের মস্তক কেটে নিয়ে গিদিয়োনের কাছে গেল| যেখান থেকে লোকরা যর্দন নদী পার হয় গিদিয়োন সেখানেই ছিলেন|
1 ইফ্রয়িমের লোকরা গিদিয়োনের উপর রেগে গেল| গিদিয়োনকে দেখতে পেয়ে তারা জিজ্ঞাসা করল, “আমাদের সঙ্গে কেন তুমি এমন ব্যবহার করবে? মিদিয়নদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবার সময় কেন তুমি আমাদের ডাকো নি?” 2 গিদিয়োন বললেন, “দেখো তোমরা যা করেছ আমি তা করতে পারি নি| আমার অবীযেষরের গোষ্ঠী যত ফসল তুলেছে, তোমরা ইফ্রয়িমরা তার চেয়ে অনেক বেশী ফসল তুলেছ| ফসল তোলার সময় ক্ষেতে তোমরা যত দ্রাক্ষা ফেলে রেখে যাও, আমার লোকরা তার চেয়ে কম কুড়ায| ঠিক কি না? 3 একই ভাবে তোমাদের ফসল এখন দারুণ ভালো হয়েছে| ঈশ্বরই তোমাদের হাতে মিদিয়ন নেতা ওরেব আর সেবকে পরাজিত করতে দিয়েছেন| তোমাদের কর্ম সাফল্যের সঙ্গে আমার সাফল্যের কি কোনো তুলনা চলে?” গিদিয়োনের উত্তর শুনে ইফ্রয়িমের লোকদের রাগ পডে গেল| 4 গিদিয়োন 300 জন লোক নিয়ে যর্দন নদীর ওপারে গেলেন| ওরা খুবই ক্লান্ত আর ক্ষুধার্ত ছিল| 5 গিদিয়োন সুক্কোত্ শহরের অধিবাসীদের বললেন, “আমার সৈন্যদের তোমরা কিছু খেতে দাও| ওরা খুব পরিশ্রান্ত| আমরা এখনও মিদিয়নদের রাজা সেরহ আর সলমুন্নকে ধরতে পারি নি|” 6 সুক্কোতের নেতারা বলল, “কেন আমরা তোমার সৈন্যদের খাওয়াব? তোমরা তো এখনও সেবহ আর সলমুন্নকে ধরতে পারো নি|” 7 তখন গিদিয়োন বললেন, “তোমরা আমাদের খাবার দিও না| সেবহ আর সলমুন্নকে ধরবার জন্য প্রভু বয়ং আমাদের সাহায্য করবেন| তারপর আমরা ফিরে এসে মরুভূমির কাঁটাঝোপ দিয়ে তোমাদের ছাল ছাড়াব|” 8 সুক্কোত্ শহর থেকে বেরিয়ে গিদিয়োন চলে গেল পনুযেল শহরে| সুক্কোতবাসীদের কাছে সে যেমন খাদ্য চেয়েছিল তেমনি পনূযেলবাসীদের কাছেও খাদ্য চাইল| তারাও সুক্কোতের লোকদের মতো একই কথা বলল| 9 পনূযেলের লোকদের গিদিয়োন বললেন, “যুদ্ধে জিতে আমাকে ফিরে আসতে দাও| তারপর তোমাদের এই মিনার আমি ভেঙ্গে গুঁড়িযে দেব|” 10 সেবহ আর সলমুন্না আর তাদের সৈন্যদের শিবির ছিল কর্কোর শহরে| তাদের সৈন্যরা সংখ্যায় ছিল 15,000 জন| পূর্বদেশের সৈন্যদের মধ্যে এরাই শুধু বেঁচে ছিল| 1,20,000 সৈন্য ইতিমধ্যেই হত হয়েছিল| 11 গিদিয়োন সদলবলে তাঁবুবাসীদের রাস্তা ধরলেন| রাস্তাটা নোবহ আর য়গবিহ শহরের পূর্বদিকে| কর্কোর শহরে এসে গিদিয়োন শত্রুদের আক্রমণ করলেন| শত্রুরা এই ধরণের আক্রমণের কথা ভাবতেই পারে নি| 12 মিদিয়নদের দুই রাজা সেবহ আর সল্মুন্ন পালিয়ে গেল| কিন্তু গিদিয়োন ঠিক তাদের ধরে ফেললেন| তাঁর সৈন্যরা শত্রু সৈন্যদের পরাজিত করল| 13 তারপর যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন ফিরে এলেন| তিনি এবং তাঁর লোকরা রেহসের গিরিপথ দিয়ে ফিরে এসেছিল| 14 সুক্কোত্ শহর থেকে একটি যুবককে গিদিয়োন ধরে এনেছিলেন| যুবকটিকে সে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করতে যুবকটি সুক্কোত্ শহরের দলপতি আর প্রবীণ লোকদের মিলিযে মোট 77 জনের নাম লিখে দিল| 15 অতঃপর গিদিয়োন সুক্কোত্ শহরে ফিরে এলেন| সেখানকার অধিবাসীদের কাছে এসে বললেন, “এই দেখো সেবহ আর সল্মুন্ন| তোমরা আমায় নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে বলেছিলে, ‘কেন আমরা তোমার সৈন্যদের খেতে দেব? তোমরা তো সেবহ আর সল্মুন্নকে ধরতে পার নি|” 16 এই বলে, গিদিয়োন সুক্কোত্ শহরের প্রবীণদের নিলেন| তারপর মরুভূমির কাঁটাঝোপ দিয়ে তিনি তাদের উচিত্ শিক্ষা দিলেন| 17 গিদিয়োন পনূযেল শহরের মিনার ভেঙ্গে ফেললেন| তারপর তিনি সেই শহরের নাগরিকদের হত্যা করলেন| 18 সেবহ ও সল্মুন্নকে গিদিয়োন বললেন, “তাবোর পর্বতে কয়েক জনকে তোমরা হত্যা করেছিলে| তাদের কেমন দেখতে?”তারা বলল, “তোমার মতই দেখতে| প্রত্যেকের চেহারাই ছিল রাজপুরুষের মতো|” 19 গিদিয়োন বললেন, “ওরা আমার ভাই ছিল, আমার সহোদর ভাই| তাদের তোমরা মেরে না ফেললে আমি আজ তোমাদের হত্যা করতে চাইতাম না|” 20 গিদিয়োন তার জ্যোষ্ঠ পুত্র যেথরের দিকে ফিরে বললেন, “এই রাজাদের হত্যা করো|” কিন্তু যেথর একটি ছোট ছেলে ছিল বলে ভয় পেয়ে গেল| সে তরবারি তুলল না| 21 তারপর সেবহ ও সল্মুন্ন গিদিয়োনকে বলল, “তুমি নিজেই আমাদের হত্যা করো| এই কাজের পক্ষে তোমার য়থেষ্ট শক্তি আছে|” গিদিয়োন তাদের মেরে ফেললেন| তিনি ওদের উটের ঘাড় থেকে চাঁদের আকারের সাজসজ্জাগুলি নিয়ে নিলেন| 22 ইস্রায়েলবাসীরা গিদিয়োনকে বলল, “মিদিয়নদের হাত থেকে তুমি আমাদের রক্ষা করেছ| এখন আমাদের শাসন করো| আমরা তোমাকে চাই, তোমার ছেলে, তোমার নাতি - সবাইকে চাই| তোমরা সবাই আমাদের রাজা হও|” 23 কিন্তু গিদিয়োন বললেন, “বয়ং প্রভুই তোমাদের রাজা| আমি বা আমার পুত্র তোমাদের শাসন করব না|” 24 ইস্রায়েলীয়রা যাদের পরাজিত করেছিল, তাদের মধ্যে কিছু লোক ছিল ইশ্মায়েল বংশীয়| এরা সোনার দুল পরত| গিদিয়োন ইস্রায়েলীয়দের বললেন, “আমার জন্য তোমরা একটা কাজ করো| যুদ্ধের সময় তোমরা তো অনেক জিনিসই পেয়েছিলে| তার থেকে তোমরা প্রত্যেকেই আমাকে একটি করে কানের দুল দিয়ে দাও|” 25 ইস্রায়েলবাসীরা বলল, “তুমি যা চাইছ আমরা তা খুশি হয়েই দেব|” এই বলে তারা মাটির ওপর একটা কাপড় পেতে দিল| প্রত্যেকে সেই কাপড়ের ওপর একটি করে দুল ফেলে দিল| 26 সেই সব দুল জড়ো করা হলে তাদের ওজন হল প্রায় 43 পাউণ্ড| এছাড়াও গিদিয়োনকে ইস্রায়েলীয়রা অন্যান্য উপহার দিয়েছিল| চাঁদের মতো, অশ্রুবিন্দুর মতো দেখতে জড়োযা গযনাও তারা তাকে দিয়েছিল| আর দিয়েছিল বেগুনী রঙের পোশাক| মিদিয়নরা এইসব জিনিস ব্যবহার করত| মিদিয়ন রাজাদের উটের শেকলও তারা তাকে দিয়েছিল| 27 গিদিয়োন সেই সোনা দিয়ে একটা এফোদ তৈরী করলেন| তাঁর নিজের শহর অফ্রাতে সেই এফোদকে তিনি স্থাপন করলেন| সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা এফোদটিকে পূজা করেছিল| এইভাবে তারা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকল না, কারণ তারা এফোদের পূজা করেছিল| এটা গিদিয়োন এবং তার পরিবারের কাছে একটা ফাঁদের মত হল এবং তাদের দিয়ে পাপ কাজ করালো| 28 মিদিয়নদের বাধ্য হয়েই ইস্রায়েলীয়দের প্রভুত্ব মেনে নিতে হল| ওরা আর কোন অশান্তি করল না| 40 বছর ধরে দেশে শান্তি ছিল| যতদিন গিদিয়োন বেঁচ্ছেিল ততদিন পর্য়ন্ত শান্তি ছিল| 29 যোয়াশের পুত্র যিরুব্বাল অতঃপর গিদিয়োন দেশে গেলেন| 30 তাঁর ছিল 70টি সন্তান, অনেকগুলি বিয়ে করেছিলেন বলেই তাঁর এতগুলো সন্তান| 31 শিখিমে গিদিয়োনের একজন উপপত্নী থাকত| তার গর্ভে গিদিয়োনের একটি পুত্র হল| গিদিয়োন তার নাম রাখলেন অবীমেলক| 32 যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন বৃদ্ধ বয়সে মারা গেলেন| যোয়াশের সমাধিস্থলেই তাঁকে কবর দেওয়া হল| সেই সমাধিটি অফ্রা শহরে অবস্থিত যেখানে অবীযেষর পরিবার বাস করে| 33 গিদিয়োনের মৃত্যুর পর ইস্রায়েলীয়রা আবার ঈশ্বরকে ভুলে গেল| তারা বালের ভক্ত হয়ে গেল| তারা বাল বরীত্কে তাদের দেবতা মেনে নিল| 34 তারা তাদের প্রভু ঈশ্বরকে ভুলে গেল| অথচ তিনিই তাদের চারিদিকের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন| 35 যিরুব্বাল (গিদিয়োন) পরিবারের অনুগত হয়ে তারা আর রইল না| সে তাদের য়থেষ্ট উপকার করলেও তারা তাকে মনে রাখল না|
1 অবীমেলক হলেন যিরুব্বালের পুত্র| শিখিম শহরে তাঁর কাকা জ্য়াঠারা বাস করতেন| সেখানে অবীমেলক চলে গেলেন| তাঁদের এবং মামার বাড়ির সকলের কাছে তিনি বললেন, 2 “এ কথাটা তোমরা শিখিম শহরে নেতাদের জিজ্ঞাসা কর: ‘যিরুব্বালের 70 জন পুত্রের শাসন ভাল না একজন লোকর শাসন ভাল? মনে রেখো আমি তোমাদের আত্মীয|”‘ 3 অবীমেলকের কাকা শিখিমের নেতাদের এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেন| নেতারা অবীমেলককে অনুসরণ করা স্থির করল| নেতারা বলল, “যতই হোক্, অবীমেলক আমাদের ভাই|” 4 তারা তাকে 70 খানা রূপোর খণ্ড দান করল| তারা বাল-বরীতের মন্দির থেকে এইসব রূপো এনেছিল| সেই রূপো দিয়ে অবীমেলক কিছু লোক ভাড়া করলেন| এই লোকগুলো ছিল অপদার্থ, বেপরোযা ধরণের| অবীমেলক যেখানেই যেতেন তারাও তার সঙ্গে সঙ্গে যেত| 5 অবীমেলক অফ্রায় তার পিতার বাড়ীতে গিয়ে ভাইদের হত্যা করলেন| গিদিয়োনের 70 জন পুত্রকে তিনি একসঙ্গে হত্যা করলেন| কিন্তু যিরুব্বালের ছোট ছেলেটি লুকিয়ে ছিল| সে পালিয়ে গেল| তার নাম য়োথম| 6 তারপর শিখিমের নেতারা আর মিল্লোর লোকরা সব একত্র হয়ে শিখিমে একটি বিরাট গাছের নীচে অবীমেলককে রাজা হিসাবে মেনে নিল| 7 য়োথম শুনতে পেল যে শিখিমের নেতারা অবীমেলককে রাজা করেছে| তারপর সে গরিষীম পর্বতের মাথায় উঠে গিয়ে চিত্কার করে এই গল্পটি বলতে লাগল:শোনো, শিখিমের যত নেতারা শোনো| শোনার পরেই তোমাদের কথা ঈশ্বর শুনবেন| 8 একদা বনের সমস্ত গাছপালা ভাবল জলপাই গাছ হোক না তাদের রাজা| সেই মতো তারা জলপাই গাছকে বলল, “তুমি আমাদের ওপর রাজত্ব কর|” 9 জলপাই গাছ বলল, “দেখো, মানুষ, দেবতা সবাই আমার তেলের জন্য আমাকে প্রশংসা করে| তোমরা কি চাও আমি তেলের প্রস্তুতি বন্ধ করে দিই এবং অন্য গাছদের শাসন করি?” 10 গাছরা তখন ডুমুর গাছকে বলল, “হও না তুমি আমাদের রাজা|” 11 ডুমুর গাছটি বলল, “আমি কি ডুমুর ও মিষ্ট ফল ফলান বন্ধ করে শুধুই অন্য গাছদের ওপর শাসন করব?” 12 তারপর তারা দ্রাক্ষালতার কাছে গিয়ে বলল, “দ্রাক্ষালতা, আমাদের রাজা হও|” 13 দ্রাক্ষালতা বলল, “সকলেই আমার রসের গুনে খুশি| সে মানুষই হোক অথবা ঈশ্বর| তোমরা কি চাও আমি রসের জোগান বন্ধ করে অন্য গাছদের শাসন করি?” 14 অবশেষে তারা কাঁটা ঝোপঝাড়ে গিয়ে বলল, “আমরা তোমাকে রাজা করব|” 15 তখন কাঁটাগাছ তাদের বলল, “সত্যিই যদি তোমরা আমাকে তোমাদের রাজা কর, তবে চলে এসো আমার ছায়ায়, আশ্রয় নাও এখানে| তোমরা যদি তা না করো কাঁটাঝোপ থেকে দাউদাউ করে আগুন বেরোবে| এটা লিবানোনের এরস গাছগুলিকে পুড়িয়ে দেবে|” 16 “এখন সত্যিই যদি তোমরা মনে প্রাণে অবীমেলককে রাজা করো, তাহলে তাকে নিয়ে সুখে থাকো| আর যদি তোমরা যিরুব্বাল ও তার পরিবারের প্রতি সুবিচার করেছ বলে মনে কর সে তো ভালই| 17 কিন্তু একবার ভেবে দেখো, আমার পিতা তোমাদের জন্য কি করেছিলেন| তিনি তোমাদের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন| মিদিযনের হাত থেকে তোমাদের বাঁচানোর জন্য তিনি নিজের জীবন বিপন্ন করেছিলেন| 18 কিন্তু আজ তোমরা আমার পিতার পরিবারের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছ| তোমরা তাঁর 70 জন পুত্রকে একসঙ্গে হত্যা করেছ| তোমরা অবীমেলককে তোমাদের রাজা করেছ| তোমরা তাকে রাজা করেছ কারণ সে তোমাদের আত্মীয| কিন্তু সে আমার পিতার ক্রীতদাসীর পুত্র, এছাড়া আর কিছু নয়| 19 তাই বলছি যিরুব্বাল ও তাঁর পরিবারের প্রতি সত্যিই যদি তোমরা যথার্থ ব্যবহার করে থাকো, তাহলে অবীমেলককে রাজা হিসেবে পেয়ে তোমরা সুখী হও| সেও তোমাদের নিয়ে সুখী হোক্| 20 কিন্তু যদি তোমরা তার সঙ্গে যথার্থ ব্যবহার না করে থাকো তাহলে হে শিখিমের নেতারা, মিল্লোর লোকরা তোমাদের ধ্বংস করবে| সেই সঙ্গে অবীমেলক নিজেও ধ্বংস হবে| 21 এই বলে য়োথম বের নগরে পালিয়ে গেল| সেখানে সে থাকতে লাগল, কারণ সে তার ভাই অবীমেলককে ভয় করত| 22 অবীমেলক তিন বছর ইস্রায়েলীয়দের শাসন করেছিলেন| 23 অবীমেলক যিরুব্বালের 70 জন পুত্রকে হত্যা করেছিলেন| তারা সকলেই ছিল অবীমেলকের নিজের ভাই| শিখিমের নেতারা তার এই অন্যায কাজ সমর্থণ করেছিল| সেইজন্য ঈশ্বর অবীমেলক ও শিখিমের নেতাদের মধ্যে বিবাদ বাধিযে দিলেন| শিখিমের নেতারা কিভাবে অবীমেলককে জখম করা যায় তার মতলব করছিল| 24 25 তারা আর অবীমেলককে চাইছিল না| পাহাড়ের মাথায় তারা লোকদের দাঁড় করিযে দিল| যারা ঐ পথ দিয়ে যেত তাদের ওপর চড়াও হয়ে ঐসব লোক সব কিছু কেড়ে নিত| অবীমেলক ব্যাপারটি বুঝতে পারলেন| 26 এরদের পুত্র গাল তার ভাইদের সঙ্গে নিয়ে শিখিম শহরে উঠে গেলো| সেখানকার নেতারা ঠিক করলো, তারা গালকেই বিশ্বাস করবে এবং মেনে নেবে| 27 একদিন শিখিমের লোকরা ক্ষেত থেকে দ্রাক্ষা তুলতে গেল| দ্রাক্ষা নিংড়ে তারা দ্রাক্ষারস তৈরি করল| তারপর তারা তাদের দেবতার মন্দিরে একটা অনুষ্ঠানের আযোজন করল| সেখানে তারা দ্রাক্ষারস পান করে অবীমেলককে খুব গালমন্দ করতে লাগল| 28 এবদের পুত্র গাল বলল, “আমরা সবাই শিখিমের লোক| আমরা কেন অবীমেলককে মানব? নিজেকে সে কি মনে করে? অবীমেলক যিরুব্বালের পুত্রদের মধ্যে একজন? আর সে সবূলকে করেছে তার মন্ত্রী, ঠিক কিনা? আমরা অবীমেলককে মানছি না, মানব না| আমরা আমাদের নিজেদের লোককেই মানবো| আমরা শিখিমের পিতা হমোরের লোকদের মানব| কারণ তারা আমাদের নিজের লোক| 29 তোমরা যদি আমাকে সেনাপতি বলে স্বীকার করো তাহলে আমি অবীমেলককে পরাজিত করব| আমি ওকে বলল, ‘সৈন্য সাজাও এসো, যুদ্ধ করো|”‘ 30 শিখিমের শাসনকর্তা হল সবূল| এবদের পুত্র গালের কথা সবূল সব শুনল| শুনে সে খুব রেগে গেলো| 31 সে অরুমা শহরে অবীমেলকের কাছে বার্তাবাহক পাঠাল| বার্তাটি ছিল এরকম:এবদের পুত্র গাল তার ভাইদের নিয়ে শিখিম শহরে চলে এসেছে| তারা আপনার সঙ্গে একটা ঝগড়া বাধাতে চায| গাল সারা শহরকে আপনার বিরুদ্ধে খেপিযে তুলেছে| 32 তাই আজ রাত্রেই আপনি অবশ্যই আপনার লোকদের নিয়ে শহরের বাইরে মাঠের মধ্যে লুকিয়ে থাকবেন| 33 তারপর সকালে রোদ উঠলেই শহর আক্রমণ করবেন| গাল তার দলবল নিয়ে আপনার সঙ্গে লড়াই করতে এলে যা করবার করবেন| 34 একথা শোনার পর অবীমেলক তাঁর সৈন্যদলসহ রাত্রে উঠে শহরের দিকে রওনা হলেন| সৈন্যরা চারটে দলে ভাগ হয়ে গেল| তারা শিখিম শহরের কাছাকাছি একটি জায়গায় লুকিয়ে থাকল| 35 এবদের পুত্র গাল বেরিয়ে গিয়ে শিখিম শহরের ফটকের মুখে দাঁড়িয়ে রইল| গাল যখন সেখানে দাঁড়িয়ে তখন অবীমেলক ও তাঁর সৈন্যদল লুকোনোর জায়গা থেকে বেরিয়ে এল| 36 গাল ওদের দেখল| সে সবুলকে বলল, “তাকিযে দেখ, লোকরা পর্বত থেকে নেমে আসছে|”কিন্তু সবূল বলল, “তুমি শুধু পর্বতের ছায়াই দেখছ| ছায়াগুলোকে ঠিক মানুষের মত দেখতে|” 37 কিন্তু গাল আবার বলল, “তাকিযে দেখ, কিছু লোক ওখানে থেকে নাভেল দেশে নেমে আসছে| আমি যাদুকর বৃক্ষের ওপরে কার যেন মাথা দেখলাম| 38 সবূল গালকে বলল, “তুমি কেন আগের মত হমবড়াই করছ না? তুমি বলেছিলে, ‘অবীমেলক কে? কেন আমরা তাকে মানব?’ তুমি এই মানুষগুলিকে উপহাস করেছিলে| এখন যাও, ওদের সঙ্গে লড়াই করো|” 39 গাল শিখিমের নেতাদের নিয়ে অবীমেলকের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল| 40 অবীমেলক তাঁর লোকজন নিয়ে গাল ও তার সেনাবাহিনীকে তাড়া করলেন| গালের লোকরা শিখিম শহরের ফটকের দিকে পালিয়ে গেল| পালিয়ে যাবার সময় তাদের মধ্যে অনেকে নিহত হল| 41 তারপর অবীমেলক অরূমা শহরে ফিরে এলেন| গাল ও তার ভাইদের সবূল শিখিম শহর থেকে তাড়িয়ে দিলেন| 42 পরদিন শিখিমের লোকরা মাঠে কাজ করতে গেল| অবীমেলক তা দেখলেন| 43 তিনি তাঁর লোকদের তিনটি দলে ভাগ করলেন| শিখিমের অধিবাসীদের তিনি হঠাত্ আক্রমণ করতে চেয়েছিলেন| সেই জন্য তিনি তাঁর লোকজনকে মাঠে লুকিয়ে রাখলেন| যখন তিনি দেখলেন লোকরা শহর থেকে বেরিয়ে পড়ছে, তিনি তাদের ওপর ঝাঁপিযে পড়লেন| 44 অবীমেলক সদলবলে দৌড়ে গিয়ে শিখিমের ফটকের কাছে একটা জায়গায় দাঁড়ালেন| অন্য দু-দলের লোকরা মাঠের দিকে ছুটে গিয়ে লোকদের মেরে ফেলল| 45 সারাদিন ধরে অবীমেলক শিখিমের সঙ্গে লড়াই করলেন| অবীমেলক শিখিম দখল করলেন আর সেখানকার লোকদের হত্যা করলেন| তারপর তিনি শহরটিকে তছনছ করে তার ওপর লবণ ছিটিয়ে দিলেন| 46 শিখিমের দুর্গে কিছু লোক বাস করত| যখন তারা শিখিমের ঘটনা শুনল তখন তারা এল-বরীত্ দেবতার মন্দিরের মধ্যে একটি মিনারে মিলিত হল| 47 অবীমেলক শিখিম দুর্গের নেতাদের জড়ো হবার খবর জানতে পারলেন| 48 তাই তিনি তাঁর লোকদের নিয়ে সলমোন পর্বতে উঠে এলেন| একটা কুড়ুল দিয়ে অবীমেলক গাছ থেকে কয়েক ডাল কে নিলেন| ডালগুলো কাঁধে নিয়ে সঙ্গের লোকদের অবীমেলক বললেন, “আমি যা করলাম তোমরা তা চ্প্ করে ফেল|” 49 এই কথা শুনে তাঁর দেখাদেখি তারাও ডালগুলো কেটে ফেলল| তারপর এল্-বরীত্ মন্দিরের সবচেয়ে নিরাপদ ঘরের গায়ে সেগুলো তারা জড়ো করল| আগুন লাগিয়ে দিল ডালগুলোয| সেখানে যারা ছিল তাদের পুড়িয়ে মারল| এই ভাবে শিখিম দুর্গের কাছে বসবাসকারী প্রায় 1,000 নরনারী মারা গেল| 50 তারপর সদলবলে অবীমেলক তেবস শহরে গেলেন| তারা শহরটি দখল করল| 51 শহরের মধ্যে একটা বেশ মজবুত মিনার ছিল| শহরের লোকরা আর নেতারা পালিয়ে গিয়ে সেখানে আশ্রয় নিল| মিনারের দরজায তালাচাবি দিয়ে তারা ছাদে উটে গেল| 52 অবীমেলক দুর্গ আক্রমণ করলেন এবং দুর্গটা আগুন দিয়ে বালিয়ে দেবার জন্য দুর্গের দরজার কাছে গেলেন| 53 কিন্তু তিনি যখন দরজার গোড়ায দাঁড়িয়ে, সেই সময় দুর্গের ছাদ থেকে একজন নারী তাঁর মাথা লক্ষ্য করে একটা পেষাই করবার পাথরের চাঁই ফেলে দিল| অবীমেলকের মাথার খুলি সেই পাথরের ঘাযে গুঁড়িযে গেল| 54 সেই মূহুর্তে অবীমেলক তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “তরবারিটা বের করে আমাকে মেরে ফেল| তোমাকেই এ কাজটা করতে হবে| লোক যেন না বলে, ‘একটা স্ত্রীলোক আমাকে মেরে ফেলেছে|”‘ তাই হল| ভৃত্যটি তাঁকে তরবারির কোপে মেরে ফেলল| অবীমেলক মারা গেলন| 55 অবীমেলক মারা গেছে দেখে ইস্রায়েলের লোকরা সকলে দেশে ফিরে গেল| 56 অবীমেলক তাঁর অসত্ কর্মের জন্য ঈশ্বর এভাবেই শাস্তি দিলেন| তাঁর 70 জন ভাইকে হত্যা করে অবীমেলক তাঁর পিতার বিরুদ্ধে পাপ করেছিলেন| 57 ঈশ্বর শিখিম শহরের লোকদেরও অন্যায কর্মের জন্য শাস্তি দিয়েছিলেন| এভাবেই য়োথমের কথা ফলে গিয়েছিল| (য়োথম যিরুব্বালের কনিষ্ঠ পুত্র| আর যিরুব্বালই ছিল গিদিয়োন|)
1 অবীমেলকের মৃত্যুর পর ইস্রায়েলীয়দের বাঁচানোর জন্য ঈশ্বর আর একজন বিচারককে পাঠালেন| তার নাম তোলয| তার পিতার নাম পূযা| পূযার পিতার নাম দোদয| তোলয ইষাখর পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিল| থাকত শামীর শহরে| শহরটা ইফ্রয়িমের পাহাড়ের দেশে অবস্থিত| 2 তোলয 23 বছর ধরে ইস্রায়েলবাসীদের বিচারক ছিল| মৃত্যুর পর তাকে শামীর শহরে কবর দেওয়া হয়েছিল| 3 তোলযের মৃত্যুর পর ঈশ্বর যাযীরকে বিচারক করে পাঠালেন| যাযীর গিলিয়দে থাকতো| 22 বছর যাযীর ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল| 4 তার 30 জন পুত্র ছিল| তারা 30টি গাধায চড়ে বেড়াত| তারা গিলিয়দের 30 শহরের দেখাশোনা করত| এমনকি আজও সবাই এই শহরগুলোকে যাযীরের শহর বলেই জানে| 5 যাযীর মারা গেলে তাঁকে কামোন শহরে কবর দেওয়া হল| 6 প্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ সেই পাপকর্মে আবার ইস্রায়েলবাসীরা রত হল| তারা বাল আর অষ্টারোতের মূর্ত্তির পূজা করতে লাগল| সেই সঙ্গে তারা অরাম, সীদোন, মোযাব, অম্মোন এবং পলেষ্টীয় দেবতাদের পূজা করত| ইস্রায়েল তাদের প্রকৃত প্রভুকে ত্যাগ করল আর তাঁর সেবা বন্ধ করল| 7 তাই প্রভু ইস্রায়েলীয়দের ওপর ক্রুদ্ধ হলেন| তিনি পলেষ্টীয় ও অম্মোনদের ইস্রায়েলবাসীদের পরাজিত করবার জন্য অনুমতি দিলেন| 8 ঐ বছরেই যর্দন নদীর পূর্বদিকে গিলিয়দ অঞ্চলে যেসব ইস্রায়েলীয় থাকত তাদের ওরা হারিযে দিল| এই অঞ্চলেই ছিল ইমোরীয়দের বাস| এইসব ইস্রায়েলবাসীরা 18 বছর দুঃখ কষ্ট ভোগ করেছিল| 9 অম্মোনরা তারপর যর্দন পেরিযে যিহূদা, বিন্যামীন আর ইফ্রয়িমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল| অম্মোনদের উত্পীড়নের কারণে ইস্রায়েলীয়দের প্রভূত দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল| 10 এখন ইস্রায়েলীয়রা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকতে লাগল| তারা বলল, “হে ঈশ্বর, আমরা আপনার বিরুদ্ধে পাপ করেছি| আমরা আমাদের প্রভুকে ত্যাগ করে বালের মূর্ত্তি পূজা করেছি|” 11 প্রভু তাদের বললেন, “যখন মিশরীয়, ইমোরীয়, অম্মোনীয় এবং পলেষ্টীয় লোকরা তোমাদের মেরে ফেলছিল, তোমরা আমার কাছে এসে কেঁদেছিলে| আর আমি তোমাদের তাদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলাম| 12 তারপর সীদোনীয, অমালেকীয় আর মাযোনীযরা যখন তোমাদের আক্রমণ করল, তখনও তোমাদের আমি বাঁচিয়েছি| 13 কিন্তু তারপর তোমরা আমাকে ছেড়ে অন্য দেবতাদের পূজায় মেতেছিলে| তাই এবার আর তোমাদের কথা শুনব না| 14 যাও তাদের কাছেই গিয়ে সাহায্য চাও| তোমাদের বিপদে ঐসব দেবতাই এবার তোমাদের রক্ষা করুক|” 15 কিন্তু ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুকে বলল, “আমরা পাপ করেছি| আপনি আমাদের প্রতি যা ইচ্ছা হয় করুন| কিন্তু প্রভু দয়া করুন, শুধুমাত্র আজকের জন্য আমাদের রক্ষা করুন| “ 16 এই বলে তারা সমস্ত মূর্ত্তি ছুঁড়ে ফেলে দিল| আবার তারা প্রভু ঈশ্বরের উপাসনা করতে শুরু করল| অগত্যা প্রভু তাদের কষ্ট দেখলেন ও বেদনাবোধ করলেন| 17 অম্মোনরা যুদ্ধের জন্য তৈরী হল| তাদের শিবির ছিল গিলিয়দে| ইস্রায়েলবাসীরাও সব এক জায়গায় জড়ো হল| তাদের শিবির হল মিস্পা শহরে| 18 গিলিয়দের নেতারা বলল, “অম্মোনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যে আমাদের নেতৃত্ব দেবে সেই হবে গিলিয়দবাসীদের প্রধান নেতা|”
1 গিলিয়দ পরিবারগোষ্ঠীর একজন হচ্ছে যিপ্তহ| সে খুব শক্তিশালী য়োদ্ধা| কিন্তু সে গণিকার পুত্র| তার পিতার নাম ছিল গিলিয়দ| 2 গিলিয়দের নিজের স্ত্রীর অনেকগুলো পুত্র| পুত্ররা বড় হয়ে যিপ্তহকে দেখতে পারত না| তারা তাকে শহর ছাড়া করল| তারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির এক কানাকড়িও পাবে না, কারণ তুমি আমাদের মাযের পেটের ভাই নও| তুমি অন্য নারীর সন্তান|” 3 ভাইদের কথায় যিপ্তহ শহর ছেড়ে চলে গেল| সে টোব দেশে বাস করত| টোবে কিছু শক্তিশালী লোক যিপ্তহকে অনুসরণ করতে লাগল| 4 কিছুদিন পরে অম্মোনরা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ চালাতে লাগল| 5 গিলিয়দের নেতারা য়িপ্তহের কাছে গেল তাকে ফিরে আসার জন্য অনুনয় করতে| তারা যিপ্তহকে টোব ছেড়ে গিলিয়দে ফিরে আসতে বলল| 6 নেতারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের কাছে এসে আমাদের নেতা হও| তোমার নেতৃত্বে আমরা অম্মোনদের সঙ্গে লড়াই করবো|” 7 যিপ্তহ তাদের বলল, “তোমরাই তো আমাকে ভিটেছাড়া করেছিলে| তোমরা তো আমায় ঘৃণা কর| তাহলে এখন কেন আবার বিপদে পড়েছো বলে আমার কাছে এসেছ?” 8 তারা বলল, “এই কারণেই আমরা তোমার কাছে এসেছি| দয়া করো| আমাদের মধ্যে তুমি এসো, অম্মোনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাও| তুমিই গিলিয়দের অধিবাসীদের সেনাপতি হবে|” 9 যিপ্তহ বলল, “বেশ, যদি তোমরা চাও যে আমি গিলিয়দে ফিরে আসি এবং অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করি ভালো কথা| প্রভুর সহায়তায যদি আমি জিতি তাহলে আমিই হবো তোমাদের নতুন নেতা|” 10 গিলিয়দের নেতারা বলল, “আমরা যে সব কথা বলেছি প্রভু সবই শুনছেন| আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তুমি যা করতে বলবে আমরা তাই করব|” 11 অগত্যা যিপ্তহ তাদের সঙ্গে চলে গেল| তারা যিপ্তহকে তাদের নেতা ও সেনাপতি করে দিলে মিস্পা শহরে প্রভুর সামনে যিপ্তহ আর একবার তার কথাগুলো শুনিয়ে দিল| 12 অম্মোনদের রাজার কাছে যিপ্তহ কয়েকজন বার্তাবাহক পাঠাল| বার্তাবাহকরা রাজার কাছে এই বার্তা শোনাল, “অম্মোনবাসী আর ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে সমস্যাটা কি? কেন তোমরা আমাদের দেশে যুদ্ধ করতে এসেছ?” 13 রাজা তাদের বলল, “ইস্রায়েলের সঙ্গে আমাদের লড়াই জারি রযেছে কারণ ওরা মিশর থেকে চলে আসার সময় আমাদের সমস্ত জমিজায়গা কেড়ে নিয়েছে| অর্ণোন নদী থেকে য়ব্বোক নদী এবং যর্দন নদী পর্য়ন্ত আমাদের যত জমি আছে, সব ওরা নিয়ে নিয়েছে| এখন যাও ইস্রায়েলীয়দের গিয়ে বলো, “আমাদের জায়গাগুলো যেন কোনো ঝামেলা না করে ফিরিযে দেয|” 14 দূতরা যিপ্তহর কাছে এই কথা শোনাল| তারপর যিপ্তহ আবার তাদের অম্মোনদের রাজার কাছে পাঠাল| 15 তারা যে বার্তা নিয়ে গেল তা এরকম:যিপ্তহ এই কথা বলেন: ইস্রায়েল মোযাব বা অম্মোনদের কোন জায়গা নেযনি| 16 ইস্রায়েলীয়রা যখন মিশর থেকে চলে আসে তখন তারা মরুভূমিতে ছিল| সেখান থেকে গেল লোহিত সাগরে| তারপর কাদেশে| 17 ইস্রায়েলীয়রা ইদোমের রাজার কাছে দূত পাঠাল| দূতরা সাহায্য চাইল| তারা বলল, “ইস্রায়েলীয়দের তোমাদের দেশের ওপর দিয়ে যেতে দাও|” কিন্তু ইদোমের রাজা আমাদের যেতে দিল না| মোয়াবের রাজার কাছেও আমরা একই রকম বার্তা পাঠালাম| সেও তার দেশের ওপর দিয়ে আমাদের যেতে দিল না| অগত্যা ইস্রায়েলীয়রা কাদেশেই থেকে গেল| 18 তারপর ইস্রায়েলীয়রা মরুভূমি দিয়ে আর ইদোম ও মোযাব দেশের পাশ দিয়ে যেতে লাগল| তারা মোয়াবের পূর্বদিকে গিয়ে অর্ণোন নদীর ওপারে তাঁবু গাড়ল| মোয়াবের সীমানা তারা পেরোল না| মোয়াবের ধারেই অর্ণোন নদী| 19 তারপর ইমোরীয় রাজা সীহোনের কাছে ইস্রায়েলীয়রা দূত পাঠাল| সীহোন ছিল হিষ্বোনের রাজা| দূতেরা সীহোনকে বলল, “তোমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে ইস্রায়েলীয়দের যেতে দাও| আমরা আমাদের দেশে যেতে চাই|” 20 কিন্তু ইমোরীয়দের রাজা সীহোন ইস্রায়েলীয়দের ঢুকতে দিল না| সীহোন লোকদের নিয়ে য়হসে তাঁবু খাটাল| তারপর তারা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করল| 21 কিন্তু প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের সহায় ছিলেন, তাই সীহোন ও তার সৈন্যরা পরাজিত হল| তাই ইমোরীয়দের দেশ হল ইস্রায়েলীয়দের সম্পত্তি| 22 তারা ইমোরীয়দের সব জমিজায়গা পেয়ে গেল| দেশটি অর্ণোন নদী থেকে বিস্তৃত হল| তাছাড়া মরুভূমি থেকে যর্দন নদী পর্য়ন্ত দেশটা বড় হয়ে গেছে| 23 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর নিজে ইমোরীয়দের তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন| সেই দেশ তিনি ইস্রায়েলীয়দের হাতে তুলে দিলেন| তোমরা কি মনে করো ইস্রায়েলীয়দের তোমরা দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবে? 24 অবশ্যই তোমাদের দেবতা কমোশ তোমাদের জন্যে যে দেশ দিয়েছেন সেখানে তোমরা থাকতে পারো| এবং আমরাও আমাদের প্রভু ঈশ্বরের দেওয়া ভূখণ্ডে থাকব| 25 তুমি কি সিপ্পোরের পুত্র বালাকের চেয়ে উত্কৃষ্ট? বালাক ছিল মোয়াবের রাজা| সে কি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে তর্ক করেছিল? সে কি বস্তুত তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল? 26 ইস্রায়েলীয়রা 300 বছর ধরে হিষ্বনে আর সেই শহরের লাগোযা কয়েকটি জায়গায় বাস করেছে| অরোযেরে এবং তার পাশের শহরেও 300 বছর ধরে বাস করেছে| 300 বছর ধরে তারা বাস করেছে অর্ণোন নদীর ধারে সমস্ত শহরে| এতদিন তোমরা কেন এইসব শহর দখল করো নি? 27 ইস্রায়েলীয়রা তোমাদের কাছে কোনো অপরাধ করে নি| অথচ তোমরা তাদের ওপর ঘোর অন্যায করেছ| প্রভুই পরম বিচারক| বয়ং তিনিই বিচার করুন, ইস্রায়েল আর অম্মোনদের মধ্যে কারা ঠিক কাজ করেছে|” 28 অম্মোনের রাজা যিপ্তহর এইসব কথা শুনতে চাইল না| 29 তখন যিপ্তহর ওপর প্রভুর আত্মা ভর করলেন| গিলিয়দ এবং মনঃশি প্রদেশের ভেতর দিয়ে যিপ্তহ হেঁটে গেল| সে গিলিয়দের মিস্পা শহরে পৌঁছাল| সেখান থেকে সে অম্মোনদের দেশে গেল| 30 প্রভুর কাছে যিপ্তহ একটি প্রতিশ্রুতি করেছিল| সে বলেছিল, “যদি অম্মোনদের হারিযে দেবার কাজে তুমি আমাদের সহায় হও, 31 তবে যখন আমি বিজয়ী হয়ে বাড়ী ফিরব তখন আমাকে অভিনন্দন জানাতে যে আমার বাড়ি থেকে প্রথমে বেরিয়ে আসবে, প্রভুকে আমি তা হোমবলি রূপে উত্সর্গ কব|” 32 যিপ্তহ অম্মোনদের দেশে গেল| তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল; প্রভুর কৃপায় সে জয়লাভ করল| 33 অরোযের শহর থেকে মিন্নীত শহর পর্য়ন্ত যত অম্মোন ছিল যিপ্তহ সকলকে পরাজিত করল| সে 20টি শহর জয় করল| তারপর সে আবেল ও করামীম শহরের অম্মোনদের পরাজিত করল| এভাবে ইস্রায়েলীয়রা অম্মোনদের পরাজিত করল| অম্মোনদের মস্ত বড় পরাজয় হল| 34 যিপ্তহ মিস্পায ফিরে এলো| বাড়ি পৌঁছতেই তাকে দেখবার জন্য তার মেয়ে বেরিয়ে এল| মেয়েটি তবলা বাজিযে নাচছিল| সে ছিল তার একমাত্র মেয়ে| যিপ্তহ তাকে খুব ভালবাসত| য়িপ্তহের আর কোন ছেলেমেয়ে ছিল না| 35 যিপ্তহ যখন দেখল তার মেয়েই বাড়ি থেকে সবচেয়ে আগে বেরিয়ে এসেছে তখন সে শোকে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেলল| সে বলল, “হায, ওরে আমার মেয়ে| তুই আমার একি সর্বনাশ করলি! তুই আমায় কি দুঃখ দিলি জানিস না| আমি যে প্রভুর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সে তো ফেলতে পারবে না!” 36 মেয়েটি যিপ্তহকে বলল, “পিতা, প্রভুর কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ তা তোমায় রাখতেই হবে| যা বলেছ তাই করো| সবচেয়ে বড় কথা প্রভুর কৃপায় তুমি শত্রু অম্মোনদের পরাজিত করেছ|” 37 তারপর য়িপ্তহের মেয়ে তার পিতাকে বলল, “কিন্তু তার আগে আমার জন্য একটা কাজ করো| দু-মাস আমায় একলা থাকতে দাও| আমি পাহাড়ে পর্বতে যাব| আমি বিয়ে করব না, ছেলেমেয়েও হবে না| অনুমতি দাও আমি সঙ্গীদের নিয়ে যাই| সকলে মিলে আমরা কাঁদব|” 38 যিপ্তহ বলল, “বেশ তাই হোক্|” যিপ্তহ মেয়েকে দু-মাসের জন্য পাঠিয়ে দিল| সঙ্গীদের নিয়ে মেয়ে পাহাড় পর্বতে কাটাল| সে বিয়ে করবে না আর ছেলেমেয়ে হবে না এই দুঃখে সঙ্গীরা কেঁদে ভাসাল| 39 দু মাস কেটে গেলে মেয়ে পিতার কাছে ফিরে এল| যিপ্তহ প্রভুর কাছে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করল| তার মেয়ে কারও সঙ্গে কখনই কোন দৈহিক সম্পর্ক রাখে নি| আর এই ঘটনা থেকেই ইস্রায়েলীয়দের একটা রীতি চালু হল| 40 প্রতি বছর ইস্রায়েলীয়দের মেয়েরা যিপ্তহর মেয়েটিকে স্মরণ করে চারদিন ধরে কাঁদত|
1 ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা সৈন্যদের ডাক দিল| তারপর নদী পেরিযে তারা সকলে সাফোন শহরে গেল| তারা যিপ্তহকে বলল, “কেন তুমি অম্মোনদের সঙ্গে লড়াইয়ে আমাদের সাহায্য চাও নি? আমরা তোমায় পুড়িয়ে মারব| তোমার বাড়িও বালিয়ে দেব|” 2 যিপ্তহ জবাব দিল, “অম্মোনরা আমাদের নানা সমস্যায় ফেলেছিল| তাই আমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি| আমি তো তোমাদের সাহায্য চেয়েছিলাম| কিন্তু কেউই আমায় সাহায্য করতে এগিয়ে আসে নি| 3 যখন দেখলাম তোমরা কেউ কোন সাহায্য করবে না, তখন আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পেরিযে অম্মোনদের সঙ্গে যুদ্ধে নেমে পড়লাম| ওদের হারাতে প্রভু আমায় সাহায্য করলেন| তাহলে আজ কেন তোমরা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসেছ?” 4 তারপর যিপ্তহ গিলিয়দের সব লোকদের ডাকল| তারা ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করল| কারণ ইফ্রয়িমরা গিলিয়দের লোকদের অপমান করেছিল| তারা বলেছিল, “তোমরা গিলিয়দের লোকরা শুধুমাত্র ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর থেকে বেঁচে যাওয়া লোক, এছাড়া তোমাদের কোনো পরিচয নেই| তোমাদের থাকার মতো কোন জমিজায়গা নেই| তোমরা কিছুটা ইফ্রয়িমের, কিছুটা মনঃশির|” গিলিয়দের লোকরা ইফ্রয়িমের লোকদের হারিযে দিল| 5 যে যে জায়গা দিয়ে লোকরা যর্দন নদী অতিক্রম করত গিলিয়দের লোকরা সেইসব জায়গা দখল করে নিল| এসব জায়গা দিয়ে ইফ্রয়িমের দেশে যাওয়া যেত| যখনই ইফ্রয়িমের কোন বেঁচে থাকা লোক বলত, “আমায় নদী পার হতে দাও|” গিলিয়দের লোক জিজ্ঞাসা করত, “তুমি কি একজন ইফ্রয়িম?” যদি সে বলত, “না,” 6 তাহলে তারা বলত, “আচ্ছা, তবে বলো তো ‘শিব্বোলেত্|”‘ ইফ্রয়িমের লোকরা শব্দটা ঠিকমত উচ্চারণ করতে পারত না| তারা উচ্চারণ করত “সিব্বোলেত্|” তাই তাদের মধ্যে কোন লোক যদি বলত, “সিব্বোলেত্” তাহলে গিলিয়দের লোকরা বুঝতে পারতো সে একজন ইফ্রয়িম| সঙ্গে সঙ্গে তারা তাকে ঘাট পারাপারের জায়গায় মেরে ফেলতো| এইভাবে তারা 42,000 ইফ্রয়িমের লোককে হত্যা করেছিল| 7 ছ’বছর যিপ্তহ ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল| তারপর সে মারা গেল| গিলিয়দে তার শহরে তাকে ওরা কবর দিল| 8 যিপ্তহর মৃত্যুর পর ইস্রায়েলবাসীদের বিচারক হল ইব্সন| তার বাড়ি বৈত্লেহেম শহরে| 9 তার 30জন পুত্র আর 30 জন কন্যা ছিল| 30জন কন্যাকে ইব্সন বলল যারা আত্মীয নয় এমন পুরুষদেরই বিয়ে করতে| তার 30জন পুত্রও বিয়ে করল অনাত্মীয 30জন কন্যাকে| ইব্সন সাত বছর ধরে ইস্রায়েলের বিচারক ছিল| 10 ইব্সন মারা গেলে তাকে বৈত্লেহমে কবর দেওয়া হল| 11 ইব্সনের পর বিচারক হল এলোন| সবূলূন পরিবারগোষ্ঠীর লোক| সে দশ বছর ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল| 12 তারপর তার মৃত্যু হল| তাকে সবূলূন দেশের অযালোন শহরে কবর দেওয়া হয়েছিল| 13 এলোনের পর, হিল্লেলের পুত্র অব্দোন ইস্রায়েলীয়দের বিচারক হল| অব্দোন পিরিযাথোন শহর থেকে এসেছিল| 14 অব্দোনের 40 জন পুত্র আর 30 জন পৌত্র ছিল| তারা 70টা গাধার ওপর চড়ে বেড়াত| অব্দোন আট বছর বিচারক ছিল| 15 তারপর সে মারা গেল| তাকে পিরিযাথোন শহরে কবর দেওয়া হল| শহরটি ইফ্রয়িমদের দেশে অবস্থিত| অমালেকীয়রা এই পাহাড়ী দেশে বাস করত|
1 আবার ইস্রায়েলীয়রা পাপ কাজে মেতে উঠল| প্রভু তাদের লক্ষ্য করলেন| তাই প্রভু পলেষ্টীয়দের উপর 40 বছর ধরে ইস্রায়েলীয়দের শাসন করার ভার দিলেন| 2 সরা শহরে মানোহ নামে একজন লোক ছিল| সে ছিল দান পরিবারগোষ্ঠীর লোক| মানোহর স্ত্রী ছিল নিঃসন্তান| 3 একদিন প্রভুর এক দূত তার স্ত্রীর কাছে দেখা দিয়ে বলল, “তুমি বন্ধ্যা হয়ে রয়েছ| কিন্তু তুমি গর্ভবতী হবে, তোমার সন্তান হবে| 4 দ্রাক্ষারস বা কোন কড়া পানীয় পান করো না| অশুচি কোন খাদ্য খাবে না| 5 কারণ তুমি গর্ভবতী হবে এবং একটি পুত্রের জন্ম দেবে| সেই পুত্রকে ঈশ্বরের কাছে একটা বিশেষ উপায়ে উত্সর্গ করা হবে| উপায়টা হচ্ছে, সে হবে নাসরতীয়| তাই কখনও তার চুল কাটবে না| সে জন্মাবার আগে থেকেই ঈশ্বরের একজন বিশেষ ব্যক্তি হবে| সে-ই পলেষ্টীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করবে|” 6 তখন সেই স্ত্রী তার স্বামীর কাছে গিয়ে সব কিছু বলল| সে বলল, “ঈশ্বরের কাছ থেকে একজন আমার কাছে এসেছিল| তাকে দেখতে ঈশ্বরের এক দূতের মতো| আমি বেশ ভয় পেয়েছিলাম| এমনকি আমি তাকে জিজ্ঞাসাও করি নি সে কোথা থেকে এসেছে| সে তার নাম কিছুই বলল না| 7 সে শুধু এটুকুই বলল, “তুমি গর্ভবতী হবে| তোমার পুত্র হবে| দ্রাক্ষারস বা কোন ঝাঁজাল কড়া পানীয় পান করবে না| কোন অশুদ্ধ খাবার খাবে না| কারণ তোমার সেই সন্তানকে ঈশ্বরের কাছে কোন বিশেষ পদ্ধতিতে উত্সর্গ করা হবে| সে জন্মাবার আগে থেকেই ঈশ্বরের একজন বিশেষ ব্যক্তি হবে এবং আমৃত্যু সে তাই থাকবে|”‘ 8 তাই শুনে মানোহ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল| সে বলল, “হে প্রভু, দয়া করে আপনি ঈশ্বরের সেই ব্যক্তিকে আবার আমাদের কাছে পাঠান| যে শিশু অচিরেই জন্মাবে, তাকে আমরা কিভাবে গড়ে তুলব বলে দিন|” 9 ঈশ্বর মানোহর প্রার্থনা শুনলেন| ঈশ্বরের দূত আবার তার স্ত্রীকে দেখা দিলেন| সে তখন মাঠের মধ্যে একা বসেছিল| মানোহ তার সঙ্গে ছিল না| 10 সে ছুটে স্বামীর কাছে গিয়ে বলল, “সেই ব্যক্তিটি যে আগে একবার আমার কাছে এসেছিল, আবার এসেছে!” 11 মানোহ স্ত্রীর সঙ্গে তার কাছে এল| সে জিজ্ঞাসা করল, “আপনিই কি সেই, যিনি এর আগে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন?”প্রভুর সে দূত বললেন, “হ্যাঁ, আমিই|” 12 মানোহ বলল, “আশা করি যা বলেছেন তাই হবে| এবার বলুন ছেলেটি কিরকম ভাবে জীবন কাটাবে? সে কি করবে?” 13 প্রভুর দূত মানোহকে বলল, “আমি যা-যা করতে বলেছি তোমার স্ত্রীকে সে সব অবশ্যই করতে হবে| 14 যে সব জিনিস দ্রাক্ষালতায জন্মায়, সে সব যেন সে না খায়| কোন দ্রাক্ষরস বা চড়া ধরণের কোন পানীয় যেন সে কিছুতেই না পান করে| কোন অশুচি খাবার সে কোন মতেই খাবে না| ঠিক যা যা আদেশ দিয়েছি সেই রকমই কাজ যেন সে করে|” 15 তখন মানোহ প্রভুর দূতকে বলল, “দয়া করে আপনি একটু বসুন| আমরা আপনাকে কচি পাঁঠার মাংস রান্না করে খাওয়াব|” 16 প্রভুর দূত বলল, “তোমরা আমাকে যেতে না দিলেও আমি তোমাদের সঙ্গে খাবো না| তবে একান্তই যদি কিছু করতে চাও তাহলে প্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি উত্সর্গ করো|” (মানোহ বুঝতে পারে নি যে লোকটি সত্যিই প্রভুর দূত|) 17 মানোহ প্রভুর দূতকে জিজ্ঞাসা করল, “আমি কি আপনার নাম জানতে পারি? কারণ আপনার কথামত সব কিছু হলে আমরা আপনাকে সম্মান জানাব|” 18 প্রভুর দূত বললেন, “কেন তুমি আমার নাম জানতে চাইছ? এটা তো আশ্চর্য়্য় ব্যাপার!” 19 তারপর মানোহ একটা পাথরে একটা কচি পাঁঠাকে বলি দিল| সেই সঙ্গে একটি শস্য নৈবেদ্যও প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করল এবং সে একটি আশ্চর্য়্য় কাজ করল| 20 মানোহ আর তার স্ত্রী যা ঘটেছিল তার সব দেখল| বেদী থেকে আগুনের শিখা যখন আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছিল তখন প্রভুর দূত আগুনের মধ্য দিয়ে স্বর্গে চলে গেল| এই দৃশ্য দেখার পর তারা দুজন ভূমিতে মাথা ঠেকিযে প্রণাম করল| 21 প্রভুর সেই দূত আর কখনও মানোহ এবং তার স্ত্রীর কাছে আবির্ভূত হয় নি| অবশেষে মানোহ বুঝতে পারল যে লোকটি সত্যিই প্রভুর দূত| 22 মানোহ তার স্ত্রীকে বলল, “আমরা ঈশ্বর দর্শন করেছি! এখন আমরা নিশ্চিত মারা যাব!” 23 কিন্তু তার স্ত্রী বলল, “প্রভু আমাদের মারতে চান না| তা যদি হত তাহলে তিনি আমাদের হোমবলি ও শস্যের নৈবেদ্য গ্রহণ করতেন না| তিনি আমাদের এইসব দৃশ্য দেখাতেন না| তা যদি হত তাহলে তিনি আমাদের এই সব কথা বলতেন না|” 24 তারপর তার একটি সন্তান হল| সে তার নাম দিল শিম্শোন| শিম্শোন বড় হয়ে উঠল| প্রভু তাকে আশীর্বাদ করলেন| 25 শিম্শোন যখন মহনেদান শহরে ছিল তখন তার উপর প্রভুর আত্মা ভর করল| শহরটি সরা আর ইষ্টায়োল শহরের মাঝখানে অবস্থিত|
1 শিম্শোন তিম্না শহরের দিকে নেমে এল| সেখানে সে একজন পলেষ্টীয় নারীকে দেখতে পেল| 2 বাড়ি ফিরে শিম্শোন তার পিতামাতাকে বলল, “আমি তিম্নায একজন পলেষ্টীয় নারী দেখেছি| তোমরা তাকে আমার কাছে এনে দাও| আমি তাকে বিয়ে করতে চাই|” 3 তার পিতামাতা বলল, “তুমি তো ইস্রায়েলের একজন মেয়েকে বিয়ে করতে পারো| পলেষ্টীয়দের মেয়েকে বিয়ে করতে তোমার এত ইচ্ছে কেন? এসব লোকদের এমনকি সুন্নত্ পর্য়ন্ত হয় নি|” শিম্শোন এসব কথা শুনল না|সে বলল, “ঐ মেয়েটিকেই আমার জন্য এনে দাও| তাকেই শুধু আমি চাই|” 4 (শিম্শোনের পিতামাতা তো জানত না, এটাই ছিল প্রভুর অভিপ্রায়| তিনি কিভাবে পলেষ্টীয়দের শাযেস্তা করা যায় সেই রাস্তাই খুঁজছিলেন| সে সময় ইস্রায়েলে ওদেরই রাজত্ব ছিল| 5 নিয়ে শিম্শোন তিম্না শহরে নেমে এল| শহরের কাছাকাছি দ্রাক্ষার ক্ষেত পর্য়ন্ত তারা চলে এল| সেখানে হঠাত্ একটা য়ুব সিংহ গর্জে উঠে শিম্শোনের উপর ঝাঁপিযে পড়ল| 6 প্রভুর আত্মা মহাশক্তিতে শিম্শোনের উপর নেমে এল| খালি হাতেই শিম্শোন সিংহটাকে ছিঁড়ে দু-টুকরো করে ফেলল| অনায়াসেই সে এটা করে ফেলল| একটা কচি পাঁঠাকে চিরে ফেলার মতই কাজটা যেন সহজ হয়ে গেল শিম্শোনের কাছে| কিন্তু শিম্শোন ঘটনাটি পিতামাতার কাছে বলল না| 7 শিম্শোন শহরে গিয়ে পলেষ্টীয় মেয়েটির সঙ্গে কথাবার্তা বলল| মেয়েটি তাকে খুশি করেছিল| 8 কয়েকদিন পর শিম্শোন ফিরে এসে ঐ পলেষ্টীয় মেয়েকে বিয়ে করতে এলে পথে মৃত সিংহটিকে সে দেখল| মৃত সিংহটির গায়ে মৌমাছিরা ঝাঁকে ঝাঁকে বসে| কিছু মধুও হয়েছে| 9 শিম্শোন হাতে কিছুটা মধু তুলে নিল| মধু খেতে খেতে সে হাঁটতে লাগল| পিতামাতার কাছে এসে সে তাদেরও একটু মধু দিল| তারা সেই মধু খেল| কিন্তু শিম্শোন বলল না, সেই মধু মরা সিংহের গা থেকে পাওয়া| 10 শিম্শোনের পিতা পলেষ্টীয় মেয়েটিকে দেখতে গেল| এটাই ছিল প্রথা যে বর সে একটা ভোজসভা করবে| সেই অনুযায়ীশিম্শোন এই অনুষ্ঠানের আযোজন করতে গেল| 11 পলেষ্টীয় যখন দেখল শিম্শোন এরকম একটা ভোজের ব্যবস্থা করছে তখন তারা ওর কাছে 30 জন পলেষ্টীয়কে পাঠাল| 12 ঐ 30 জনকে শিম্শোন বলল, “আমি তোমাদের একটা ধাঁধা বলতে চাই| এই আনন্দ অনুষ্ঠান সাতদিন ধরে চলবে| এর মধ্যে তোমাদের এই ধাঁধার উত্তর দিতে হবে| উত্তর দিতে পারলে আমি তোমাদের 30টি জামা আর 30টি কাপড় দেবো| 13 কিন্তু উত্তর না দিতে পারলে তোমরা আমাকে 30টি জামা আর 30টি কাপড় দেবে|” ওরা বলল, “বল কি তোমার ধাঁধা, আমরা শুনব|” 14 শিম্শোন তখন এই ধাঁধাটা বলল:খাদকের মধ্য থেকে খাদ্য কিছু জোটে, বলবান হতে মিষ্টি কিছু ওঠে|30জন লোক তিনদিন ধরে মাথা ঘামাল, কিন্তু উত্তর দিতে পারল না| 15 চতুর্থ দিনে তারা শিম্শোনের স্ত্রীর কাছে এসে বলল, “তোমরা কি আমাদের নিঃস্ব করার জন্য নেমন্তন্ন করেছ? তোমার স্বামীর কাছ থেকে কাযদা করে ধাঁধার উত্তরটা জেনে নাও| যদি উত্তর না বের করতে পার তাহলে আমরা তোমাকে আর তোমার বাপের বাড়ির সবাইকে পুড়িয়ে মেরে ফেলবো|” 16 আর কোন উপায় না পেয়ে সে শিম্শোনের কাছে গিয়ে কাঁদতে শুরু করলো| সে বলল, “তুমি তো আমায় শুধু ঘৃণাই করো! তুমি আমায় একটুও ভালবাস না! তুমি আমার দেশের লোকদের কাছে ধাঁধা বলেছ, কিন্তু কই আমাকে তো তুমি সেই ধাঁধার উত্তরটা বলো নি|” শিম্শোন উত্তর দিল, “আমার মাতাপিতাকেও যখন উত্তরটা বলি নি, তোমাকে বলতে যাব কেন?” 17 অনুষ্ঠানের বাকি দিনগুলোয শিম্শোনের স্ত্রী কেঁদেই চলল| শেষ পর্য়ন্ত সপ্তম দিনে শিম্শোন ধাঁধার উত্তরটি স্ত্রীকে বলেই ফেলল কারণ তার স্ত্রী এই নিয়ে তাকে বিরক্ত করছিল| তারপর তার স্ত্রী দেশের লোকদের কাছে সেই উত্তরটি বলে দিল| 18 সুতরাং সাত দিনের দিন সূর্য়াস্তের আগে পলেষ্টীয়রা উত্তরটা পেয়ে গেল| শিম্শোনকে গিয়ে তারা বলল: “মধুর চেয়ে মিষ্ট কি আছে? সিংহের চেয়ে বেশী শক্তিশালী কে?”তখন শিম্শোন বলল: “যদি তোমরা আমার গরু সঙ্গে নিয়ে না চাষ করতে তোমরা আমার ধাঁধার সমাধান করতেই পারতে না|” 19 শিম্শোন খুব রেগে গিয়েছিল| প্রভুর আত্মা প্রবল শক্তির সাথে তার ওপর নেমে এল| সে অস্কিলোন শহরে চলে গেল| সেখানে সে 30 জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করল| তাদের মৃতদেহ থেকে সে সমস্ত পোশাক তুলে নিল, ধন দৌলত সরিয়ে নিল| তারপর যারা তার ধাঁধার উত্তর দিয়েছিল, তাদের সে সব বিলিযে দিল| এরপর সে পিতার বাড়িতে চলে গেল| 20 স্ত্রীকে সে নিল না| বিয়ের জন্য একজন সেরা পাত্র তাকে ঘরে তুলেছিল|
1 যখন গম তোলার সময় হল শিম্শোন তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেল| স্ত্রীকে দেবার জন্যে একটা কচি পাঁঠা নিয়ে গেল| শ্বশুরকে গিয়ে বলল, “আমি স্ত্রীর ঘরে ঢুকছি|”কিন্তু মেয়ের পিতা শিম্শোনকে ঢুকতে দিল না| 2 তার পিতা শিম্শোনকে বলল, “আমি ভেবেছিলাম তুমি তাকে ঘৃণা কর| তাই তার বিয়ে দিয়েছি একটি সেরা পাত্রের সঙ্গে| আমার ছোট মেয়ে আরও সুন্দরী| তুমি তাকেই নাও|” 3 শিম্শোন বলল, “এখন তোমাদের মানে পলেষ্টীয়দের ওপর আঘাত হানলে কেউ আর আমাকে দোষ দিতে পারবে না|” 4 এই বলে শিম্শোন বেরিয়ে গেল| সে 300টি শেযাল ধরল| সে দুটো করে শেযাল ধরে তাদের লেজ দুটো বেঁধে জোড়া তৈরি করল| প্রত্যেক জোড়া শেযালের লেজে সে একটি করে মশাল বেঁধে দিল| 5 তারপর মশালগুলো জ্বেলে দিল| পলেষ্টীয়দের শস্যক্ষেত্রে সে ঐ শেযালগুলোকে ছুটিযে দিল| এই ভাবে নতুন গজানো সমস্ত গাছ আর শস্যের গাদা সে বালিয়ে দিল| দ্রাক্ষার ক্ষেত আর সমস্ত জলপাই গাছ বালিয়ে দিল| 6 পলেষ্টীয়রা জিজ্ঞাসা করল, “কে এসব কাজ করেছে?” কেউ একজন বলল, “শিমশোন করেছে| তিম্নার কোন একজনের জামাতা হচ্ছে এই শিম্শোন| তার এই কাজের কারণ তার শ্বশুর শিম্শোনের স্ত্রীকে অন্য এক সেরা পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে|” তাই পলেষ্টীয়রা শিম্শোনের স্ত্রী আর শ্বশুরকে পুড়িয়ে মেরে ফেলল| 7 শিম্শোন পলেষ্টীয়দের বলল, “তোমরা আমার ক্ষতি করেছ; এবার আমিও তোমাদের ক্ষতি করব| তারপর আমার তোমাদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়া বন্ধ হবে|” 8 তারপর শিম্শোন পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করল| অনেক লোককে সে হত্যা করল| তারপর সে একটা গুহায় আশ্রয় নিল| গুহাটি ছিল ঐটম শিলা নামে একটি জায়গায়| 9 পলেষ্টীয়রা যিহূদায় চলে গেল| লিহী নামের একটি জায়গায় তারা বিশ্রাম নিল| তাদের সৈন্যরা সেখানে তাঁবু গাড়ল| তারা যুদ্ধের জন্য তৈরি হল| 10 যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা পলেষ্টীয়রা কেন এখানে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসেছ?”তারা বলল, “আমরা শিম্শোনকে ধরতে এসেছি| আমরা তাকে বন্দী করতে চাই| সে আমাদের প্রতি যা অন্যায করেছে তার জন্য তাকে শাস্তি দিতে চাই|” 11 যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর 3,000 লোক তখন শিম্শোনের কাছে গেল| ঐটম শিলার গুহায় গিয়ে তারা তাকে বলল, “তুমি আমাদের এ কি করলে? তুমি কি জানো না যে পলেষ্টীয়রা আমাদের শাসন করছে?শিম্শোন বলল, “তারা আমার ওপর যে অন্যায কাজ করেছে শুধুমাত্র তার জন্যেই আমি তাদের শাস্তি দিয়েছি|” 12 ওরা তখন বলল, “আমরা তোমাকে বেঁধে নিয়ে যাবার জন্য এসেছি| তোমাকে পলেষ্টীয়দের হাতে তুলে দেব|”শিম্শোন বলল, “প্রতিশ্রুতি দাও তোমরা আমাকে মারবে না|” 13 ওরা বলল, “ঠিক আছে| আমরা শুধু তোমাকে বেঁধে পলেষ্টীয়দের কাছে ধরিয়ে দেব| প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরা তোমায় হত্যা করব না|” এই বলে ওরা দুটো নতুন দড়ি দিয়ে শিম্শোনকে বেঁধে ফেলল| গুহা থেকে তাকে বের করে নিয়ে চলল| 14 শিম্শোন যখন লিহীতে এল, পলেষ্টীয়রা তাকে দেখতে এল| তারা আনন্দে চিত্কার করে উঠল| তখন প্রভুর আত্মা সবলে শিম্শোনের ওপর এল| দড়িগুলো পোড়া সূতোর মতো পলকা মনে হল এবং তার হাত থেকে খসে পড়ল| যেন সব গলে পড়েছে| 15 শিম্শোন একটা মরা গাধার চোযালের হাড় দেখতে পেল| হাড়টা নিয়ে তাই দিয়ে সে 1,000 জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করল| 16 তখন শিম্শোন বলল: গাধার একটি চোযালের হাড় দিয়েই আমি 1,000 লোক হত্যা করেছি| একটি গাধার চোযালের হাড় দিয়ে আমি তাদের মৃতদেহগুলি জড়ো করেছি| 17 এই কথা বলে চোযালের হাড়টা শিম্শোন ছুঁড়ে ফেলে দিল| সেই জায়গার নাম রামত্ লিহী| 18 শিম্শোনের খুব পিপাসা পেয়েছিল| প্রভুর কাছে সে প্রার্থনা করল| সে বলল, “হে প্রভু আমি তোমার দাস| এই যে আমার বিরাট জয় হল, সে তো তোমারই দয়ায়| পিপাসায যেন আমি মারা না যাই| তাই এখন দয়া করো তুমি| দয়া করো যেন ওরা আমায় ধরে না ফেলে, যাদের এখনও সুন্নত্ পর্য়ন্ত হয় নি|” 19 লিহীর মাঠে একটা গর্ত আছে| ঈশ্বর সেই গর্ত ফাটিযে ঝর্ণা তৈরী করলেন| সেই জল পান করে শিম্শোন তাজা হয়ে উঠল| সে আবার শক্তি অনুভব করল| সে সেই ঝর্ণার নাম দিল এন-হক্কোরী| লিহী শহরে এই ঝর্ণা আজও আছে| 20 শিম্শোন 20 বছর ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল| সেটা ছিল পলেষ্টীয়দের রাজত্ব কাল|
1 একদিন শিম্শোন ঘসা শহরে গেল| সেখানে সে একজন গণিকাকে দেখতে পেল| তার কাছে এক রাত্রি সে থাকতে গেল| 2 কেউ একজন ঘসার বাসিন্দাদের বলল, “শিম্শোন এখানে এসেছে|” তারা শিম্শোনকে হত্যা করতে চেয়েছিল| তাই তারা শহরটা ঘিরে ফেলল| ওরা শিমশোনের জন্য লুকিয়ে থেকে অপেক্ষা করতে লাগল| সারারাত তারা শহরের ফটকের পাশে চুপচাপ জেগে রইল| তারা বলাবলি করতে লাগল, “সকাল হলেই আমরা শিম্শোনকে বধ করব|” 3 কিন্তু শিম্শোন গণিকার সঙ্গে মাঝরাত পর্য়ন্ত থাকল| মাঝরাতে সে উঠে পড়ল| শহরের ফটকের দরজা চেপে ধরে সে দেওয়াল থেকে টেনে দরজা আলগা করে দিল| তারপর সে খুলে নিল দরজা, দুটো খুঁটি, দরজা বন্ধ করার খিল| এগুলো সে কাঁধে নিয়ে হিব্রোণ শহরের কাছে পাহাড়ের মাথায় উঠে গেল| 4 পরে শিম্শোন দলীলা নামে এক নারীর প্রেমে পড়ল| দলীলা থাকত সোরেক উপত্যকায়| 5 পলেষ্টীয় শাসকরা দলীলার কাছে গিয়ে বলল, “শিম্শোন কিসে এত শক্তিশালী হয় আমরা জানতে চাই| তুমি কাযদা করে তার এই গোপন রহস্যটা জেনে নিতে চেষ্টা কর| তাহলে তাকে কি করে ধরে বেঁধে ফেলা যায় তা আমরা জানব| তাহলেই তাকে আমরা ইচ্ছামত চালাতে পারব| যদি এটা করতে পার তাহলে আমরা প্রত্যেকে তোমাকে 28 পাউণ্ড করে রূপো পুরস্কার দেব|” 6 সেই মতো দলীলা শিম্শোনকে বলল, “আচ্ছা বলো তো, তুমি কি করে এত শক্তি পেলে? কিভাবে তোমাকে বেঁধে ফেলে বেকাযদায ফেলা যায়?” 7 শিম্শোন বলল, “নতুন সাতটা ধনুক বাঁধা দড়ি যে দড়িগুলো শুকনো নয়, তাই দিয়ে আমায় বেঁধে ফেলতে হবে| যদি কেউ তা পারে তাহলেই আমি আর পাঁচজনের মতো দুর্বল হতে পারব|” 8 পলেষ্টীয়রা একথা শুনে সাতটা নতুন ধনুক বাঁধা দড়ি দলীলাকে এনে দিল| সেই ধনুক বাঁধা দড়ি তখনও শুকিয়ে যায় নি| দলীলা সেই দড়ি দিয়ে শিম্শোনকে বেঁধে ফেলল| 9 কিছু লোক পাশের ঘরে লুকিয়ে ছিল| দলীলা শিম্শোনকে বলল, “শিম্শোন, পলেষ্টীয়রা তোমাকে ধরে ফেলতে যাচ্ছে|” কিন্তু শিম্শোন সহজেই দড়িগুলো খুলে ফেলল| আগুনের শিখার খুব কাছে এলে একটা সূতো যেমন হয় তেমনি করে দড়িগুলো খসে পড়ল| সুতরাং পলেষ্টীয়রা শিম্শোনের শক্তির রহস্য ভেদ করতে পারল না| 10 দলীলা শিম্শোনকে বলল, “তুমি আমাকে মিথ্যে কথা বলেছ| তুমি আমাকে বোকা বানিয়েছ| এখন বলো তো, কি করে লোক তোমাকে বেঁধে ফেলতে পারে?” 11 শিম্শোন বলল, “আমাকে নতুন দড়ি দিয়ে বাঁধতে হবে| সেই দড়ি যেন আগে কেউ ব্যবহার না করে| এরকম দড়ি দিয়ে কেউ আমাকে বাঁধলে আমি আর পাঁচজনের মতো দুর্বল হয়ে যাবো|” 12 দলীলা কয়েকটা নতুন দড়ি দিয়ে শিম্শোনকে বেঁধে ফেলল| পাশের ঘরে কিছু লোক লুকিয়ে ছিল| দলীলা শিম্শোনকে বলল, “শিম্শোন পলেষ্টীয়রা তোমাকে ধরতে আসছে|” শিম্শোন সহজেই দড়ি খুলে ফেলল| সেগুলো সে সুতোর মতো ছিঁড়ে ফেলল| 13 দলীলা শিম্শোনকে বলল, “তুমি আবার মিথ্যে কথা বলেছ| তুমি আমাকে বোকা বানিয়েছ| এবার বলো তো কি করে তোমাকে বেঁধে ফেলা যায়?”শিম্শোন বলল, “যদি তুমি তাঁত দিয়ে আমার মাথায় চুলের সাতটি বিনুনী বেঁধে একটি পিন দিয়ে আটকে দাও তাহলে আমি আর পাঁচটা সাধারণ লোকর মতো দুর্বল হয়ে যাব|”পরে শিম্শোন ঘুমোতে গেল| দলীলা তার মাথার চুলের সাতটি গোছা নিয়ে তাঁতে বুনল| 14 তারপর তাঁবুর খুঁটির সঙ্গে সেই বোনা চুলগুলিকে বেঁধে মাটিতে গেঁথে ফেলল| আবার সে শিম্শোনকে ডাকল, “পলেষ্টীয়রা তোমাকে ধরতে আসছে|” শিম্শোন তাঁত আর মাকু সব খুলে ফেলল| 15 দলীলা শিম্শোনকে বলল, “তুমি তো আমায় বিশ্বাসই করো না? তুমি কি করে বলো যে, ‘আমি তোমায় ভালবাসি|’ গোপন ব্যাপারটা তুমি আমাকে বললে না| এই নিয়ে তিনবার তুমি আমাকে বোকা বানালে| তোমার শক্তির গোপন কথা তুমি আমাকে বললে না|” 16 দিনের পর দিন দলীলা শিম্শোনকে রাগিয়ে তুলতে লাগল| তার ঘ্য়ানঘ্য়ানানি শুনতে শুনতে সে ক্লান্ত হয়ে পড়ল| ক্লান্তিতে সে যেন মরমর অবস্থায় পৌঁছাল| 17 সে এটা আর সহ্য করতে পারল না| শেষ পর্য়ন্ত সে দলীলাকে সব কিছুই বলে দিল| সে বলল, “আমি কখনও চুল কাটি না| আমার জন্মের আগে থেকেই আমাকে ঈশ্বরের কাছে উত্সর্গ করে দেওয়া হয়েছে| যদি কেউ আমার চুল কেটে নেয, তাহলে আমি অন্য পাঁচজন সাধারণ লোকর মতো দুর্বল হয়ে পড়ব|” 18 দলীলা বুঝতে পারল শিম্শোন তার গোপন কথাটা এবার সত্যই বলেছে| পলেষ্টীয় শাসকদের কাছে সে একটা খবর পাঠাল| সে বলে পাঠাল, “আর একবার ফিরে এসো, শিম্শোন আমায় সব বলে দিয়েছে|” এই খবর পেয়ে তারা আবার দলীলার কাছে চলে এল| প্রতিশ্রুতি মত দলীলাকে দেবার মত টাকা নিয়ে এল| 19 দলীলার কোলে মাথা দিয়ে শিম্শোন যখন শুয়ে ছিল, সেই সময় দলীলা তাকে ঘুম পাড়িযে দিল| তারপর সে একজন লোককে শিম্শোনের চুলের গোছা কেটে নেবার জন্য ডাকল| এইভাবে দলীলা শিম্শোনকে শক্তিহীন করে দিল| শিম্শোনের শক্তি চলে গেল| 20 দলীলা শিম্শোনকে ডেকে বলল, “শিম্শোন, পলেষ্টীয়রা তোমাকে ধরবার জন্য আসছে!” শিম্শোন জেগে উঠে ভাবলো, “আমি আগের মতোই নিজেকে বাঁচিয়ে নিতে পারব|” কিন্তু সে বুঝতে পারে নি যে প্রভু তাকে ছেড়ে চলে গেছেন| 21 পলেষ্টীয়রা শিম্শোনকে ধরে ফেলল| তারা তার চোখ খুবলে নিয়ে তাকে ঘসা শহরে নিয়ে গেল এবং যাতে সে পালিয়ে না যায় সেজন্য চেন দিয়ে বাঁধল| তারপর কারাগারে তাকে ঢুকিয়ে য়াঁতায শস্য পিষতে বাধ্য করল| 22 কিন্তু আবার শিম্শোনের চুল গজাতে লাগলো| 23 পলেষ্টীয়দের শাসকরা সবাই উত্সব করতে জড়ো হল| তারা তাদের দেবতা দাগোনের কাছে একটা মস্ত বড় নৈবেদ্য দেবার ব্যবস্থা করছিল| তারা বলল, “আমাদের দেবতাই আমাদের শিম্শোনকে হারিযে দিতে সাহায্য করেছে|” 24 পলেষ্টীয়রা শিম্শোনের দিকে তাকাল এবং তাদের দেবতার প্রশংসা করতে শুরু করল| তারা বলল:এই লোকটা আমাদের লোককে হত্যা করেছে এবং আমাদের দেশ ধ্বংস করেছে| আমাদের দেবতা আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে জয়ী করেছে| 25 লোকরা উত্সবে বেশ মেতে উঠলো| তারা বলল, “শিম্শোনকে বের করে আনো| আমরা তাকে নিয়ে মজা করব|” কারাগার থেকে শিম্শোনকে নিয়ে এসে তারা ওকে নিয়ে মজা করতে লাগল| দাগোনের মন্দিরের থামের মাঝখানে তারা শিম্শোনকে দাঁড় করাল| 26 একজন ভৃত্য শিম্শোনের হাত ধরে ছিল| শিম্শোন তাকে বলল, “যে দুই থামের উপর মন্দিরের উপরের অংশের ভার রযেছে তা আমাকে ছুঁতে দাও| আমি সেখানে হেলান দিয়ে দাঁড়াতে চাই|” 27 মন্দিরে ঠাসা ভীড়| পলেষ্টীয়দের শাসকরা সেখানে সব এসেছে| মন্দিরের ছাদে প্রায় 3,000 নরনারী| তারা শিম্শোনকে নিয়ে হাসাহাসি করছে, মজা করছে| 28 শিম্শোন প্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করল, “হে সর্বশক্তিমান প্রভু তুমি দয়া করে আমায় স্মরণ করো| ঈশ্বর, আর একবার তুমি আমায় শক্তি দাও| এই একটা কাজ আমায় করতে দাও, আমি যেন এই পলেষ্টীয়দের আমার দুই চোখ উপড়ে নেওয়ার জন্য শাস্তি দিতে পারি!” 29 তারপর শিম্শোন মন্দিরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে দুটো থামকে ধরল| থাম দুটো সমস্ত মন্দিরটাকে ধরে রেখেছিল| দুটো থামের ভেতর সে নিজেকে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করল| একটি থাম তার ডানদিকে, আরেকটা বাঁদিকে| 30 শিম্শোন বলল, “এই পলেষ্টীয়দের সঙ্গে আমার প্রাণ যাক্!” তারপর যত জোরে পারল থামদুটোকে ধাক্কা দিল| আর সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত শাসকদের ও লোকজনের ওপর মন্দিরটা ভেঙ্গে পড়ে গেল| এইভাবে শিম্শোন বেঁচে থাকা অবস্থায় যত পলেষ্টীয় হত্যা করেছিল, মরে গিয়ে তার চেয়ে ঢ়েব বেশী পলেষ্টীয় হত্যা করল| 31 শিম্শোনের ভাই আর পরিবারের লোকরা সবাই তার শবদেহ নিতে এলো| তাকে নিয়ে তারা তার পিতার সমাধিতে কবর দিল| সমাধিটা রযেছে সরা আর ইষ্টায়োল শহরের মাঝখানে| 20 বছর ধরে শিম্শোন ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিলেন|
1 পাহাড়ের দেশ ইফ্রয়িমে মীখা নামে একজন লোক ছিল| 2 মীখা তার মাকে বলল, “মা তোমার কি মনে পড়ে কেউ একজন তোমার 28 পাউণ্ড রূপো চুরি করেছিল? আমি শুনলাম তুমি এই নিয়ে অভিশাপ দিয়েছিলে| দেখ, আমার কাছেই সেই রূপো আছে| আমিই তো চুরি করেছিলাম|”তার মা বলল, “বত্স, প্রভু তোমার মঙ্গল করুন|” 3 মাযের কাছে মীখা 28 পাউণ্ড রূপো ফেরত দিয়ে দিল| মা বলল, “প্রভুর কাছে আমার এই রূপো হবে বিশেষ একটা উপহার| আমার পুত্রকে এটা দেব| সে একটা মূর্ত্তি গড়ে সেটা রূপো দিয়ে মুড়ে দেবে| তাই বলছি বাছা, এখন এই রূপো তোমার হাতেই ফিরিযে দিচ্ছি|” 4 কিন্তু মীখা সেটা মাযের কাছে দিয়ে দিল| মা তখন তা থেকে প্রায় 5 পাউণ্ড রূপো নিয়ে একজন স্বর্ণকারকে দিল| স্বর্ণকার সেই রূপো দিয়ে একটা মূর্ত্তি গড়ল| মূর্ত্তিটা রাখা হল মীখার বাড়িতে| 5 মীখার একটা মন্দির ছিল| সেখানে বিভিন্ন মূর্ত্তির পূজা হোত| মীখা একটা এফোদ তৈরী করেছিল| সে আরও কয়েকটা পারিবারিক মূর্ত্তি তৈরী করেছিল| তারপর মীখা তার একজন পুত্রকে তার যাজক হিসেবে নির্বাচন করল| ( 6 সেই সময় ইস্রায়েলীয়দের কোন রাজা ছিল না| তাই প্রত্যেকেই খেযাল খুশি মতো যা ভাল মনে করত তাই করত|) 7 যিহূদার বৈত্লেহম শহরে একজন লেবীয় ছিল| সে যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীতে থাকত| 8 সে বৈত্লেহম ছেড়ে অন্য একটি জায়গায় থাকবে বলে চলে গেল| যেতে যেতে সে এসে পড়ল মীখার বাড়িতে| ওর বাড়ি পাহাড়ি দেশ ইফ্রয়িমে| 9 মীখা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কোথা থেকে আসছ?”যুবকটি বলল, “আমি একজন লেবীয়, বৈত্লেহম যিহূদা থেকে আসছি| বসবাসের জন্য জায়গা খুঁজছি|” 10 মীখা বলল, “তুমি আমার কাছেই থাকো| তুমি আমার পিতা হয়ে, যাজক হয়ে এখানে থাকো| প্রতি বছর আমি তোমাকে 4 পাউণ্ড রূপো দেবো| তাছাড়া খাওয়া পরা তো দেবই|”লেবীয় যুবকটি মীখার কথামত কাজ করল| 11 সে মীখার সঙ্গে থাকতে রাজি হল| মীখার নিজের পুত্রদের মতই সে থেকে গেল| 12 সে হল মীখার যাজক| সে মীখার বাড়ীতেই থেকে গেল| 13 মীখা বলল, “আজ বুঝলাম প্রভু আমার ওপর প্রসন্ন হয়েছেন; কারণ আমরা যাজক হিসেবে এমন একজনকে পেয়েছি যে লেবী পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছে|”
1 সেই সময় ইস্রায়েলের কোন রাজা ছিল না| তখনও দান পরিবারগোষ্ঠী বসবাসের জায়গা খুঁজে পায় নি| তখনও তাদের নিজস্ব কোন জমি-জমা ছিল না| ইস্রায়েলের অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠী ইতিমধ্যেই জায়গা পেয়ে গিয়েছিল| দানরা পায় নি| 2 তাই দান পরিবারগোষ্ঠী দেশে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য পাঁচজন সৈন্যকে পাঠিয়ে দিল| ঐ পাঁচজন সরা আর ইষ্টায়োল শহরের লোক| এদের বেছে নেবার কারণ এরা দানদের সব পরিবার থেকেই এসেছে| তাদের দেশের উপর গুপ্তচরবৃত্তির জন্য বলা হল|পাঁচ জন পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িমে পৌঁছল| তারা মীখার বাড়ীতে এল এবং সেই রাতটা সেখানে কাটাল| 3 তারা যখন মীখার বাড়ির বেশ কাছাকাছি এসেছে, তখন সেই লেবীয় যুবকের স্বর শুনতে পেল| তার স্বর শুনে তারা চিনতে পেরেছিল| এবার দাঁড়িয়ে গেল মীখার বাড়ির দোরগোড়ায| যুবকটিকে ওরা জিজ্ঞাসা করল, “তোমাকে এখানে কে ডেকে এনেছে? এখানে তুমি কি করছ? এখানে তোমার কাজ কি?” 4 যুবকটি মীখা তার জন্য কি কি করেছে বলল| যুবকটি বলল, “মীখা আমাকে কাজে রেখেছে| আমি তার যাজক|” 5 তখন তারা বলল, “তাহলে ঈশ্বরের কাছে আমাদের জন্য কিছু চাও| আমরা জানতে চাই আমাদের জমি পাব কি না|” 6 যাজক ঐ পাঁচ জনকে বলল, “হ্যাঁ, জমি তোমরা পাবে| তোমরা নিশ্চিন্তে যেতে পারো| প্রভু তোমাদের পথ চেনাবেন|” 7 তাই ঐ পাঁচ জন চলে গেল| এবার এল লয়িশ শহরে| তারা দেখল শহরের লোকরা বেশ নিরাপদে রযেছে| সীদোনের লোকরা তাদের শাসন করছে| দেশে শান্তি রযেছে, তাদের কোন কিছুর অভাব নেই| কাছাকাছি কোথাও শত্রু নেই যে তাদের আক্রমণ করবে| তাছাড়া সীদোন শহর থেকে তারা অনেক দূরে রযেছে, আর অরামের লোকদের সঙ্গেও তাদের কোন চুক্তি নেই| 8 ঐ পাঁচ জন সরা ও ইষ্টাযোল শহরে ফিরে এল| আত্মীযস্বজনরা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “বলো কি দেখে এলে?” 9 ঐ পাঁচ জন বলল, “আমরা একটা জায়গা দেখেছি| বেশ ভাল| এবার আমাদের যুদ্ধ করতে হবে| বসে থাকলে চলবে না| চলো জমি দখল করি|” 10 তোমরা সেখানে গেলেই দেখবে জমির ছড়াছড়ি| জিনিসপত্র অঢেল| তাছাড়া, তুমি আর একটা ব্যাপারও দেখবে যে, সেখানে লোকরা কোনরকম আক্রমণের জন্যে তৈরী নয়| নিশ্চিত ঈশ্বর আমাদের ঐ জমিটি দিয়েছেন|” 11 তাই সরা আর ইষ্টায়োল শহর থেকে দান পরিবারগোষ্ঠীর 600 জন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে রওনা হল| 12 লয়িশ শহরে যাবার পথে তারা কিরিযত্-য়িযারীম শহরের কাছাকাছি থামল| জায়গাটা যিহূদার| সেখানে তারা তাঁবু গাড়ল| সেই জন্য আজও কিরিযত্-য়িযারীমের পশ্চিম অঞ্চলটার নাম মহনে-দান| অর্থাত্ দানদের শিবির| 13 সেখান থেকে 600 জন লোক পাহাড়ি দেশ ইফ্রয়িমের দিকে যাত্রা শুরু করল| তারা এল মীখার বাড়িতে| 14 লয়িশ জায়গাটি যে পাঁচ জন আবিস্কার করেছিল, তারা নিজেদের লোকদের বলল, “এখানকার একটি বাড়িতে একটা এফোদ আছে| তা ছাড়া বাড়িতে পূজা করার মতো অনেক দেবতা, খোদাই করা মূর্ত্তি আর একটা রূপোর প্রতিমা আছে| বুঝতেই পারছি কি করতে হবে| এসব নিয়ে নিতে হবে| যাও, ওসব নিয়ে এসো|” 15 তারপর তারা মীখার বাড়িতে এসে পৌঁছল| লেবীয় যুবকটি সেখানে থাকত| তারা তাকে কেমন আছে জিজ্ঞাসা করল| 16 দান পরিবারগোষ্ঠীর 600 জন লোক ফটকের কাছে দাঁড়িয়ে আছে| তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধের জন্য তৈরী| 17 পাঁচ জন গুপ্তচর বাড়ির ভেতর গেল| সদর দরজার ঠিক পাশেই দাঁড়িয়ে রইল যাজক| তার পাশে যুদ্ধের জন্য 600 জন লোক| লোকগুলি ঘরে ঢুকে খোদাই মূর্ত্তি, এফোদ, অন্যান্য মূর্ত্তি, রূপোর মূর্ত্তি সব নিয়ে নিলো| লেবীয় যাজকটি তাদের জিজ্ঞাসা করল, “এ তোমরা কি করছ?” 18 19 পাঁচ জন লোক বলল, “চুপ করো! একটি কথাও বলবে না| আমাদের সঙ্গে এস| তুমি আমাদের পিতা ও যাজক হও| এখন স্থির কর তুমি কি করবে| ভেবে দেখ, একজনের যাজক হওয়া ভাল, না সমগ্র ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীর যাজক হওয়া ভাল|” 20 কথা শুনে লেবীয় যুবকটি খুশী হল| খোদাই মূর্ত্তি, অন্যান্য মূর্ত্তি, এফোদ এইসব নিয়ে সে দানদের সঙ্গে চলে গেল| 21 তারপর দান পরিবারগোষ্ঠীর 600 জন লোক লেবীয় যাজককে নিয়ে মীখার বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়ল| তাদের সামনে ছোট ছেলেমেয়ে, জীবজন্তু আর অন্যান্য জিনিসপত্র রইল| 22 সেখান থেকে তারা অনেক দূরে এগিয়ে গেল| কিন্তু মীখার বাড়ির কাছাকাছি লোকরা সব একজায়গায় জড়ো হল| তারপর তারা দানদের পিছু নিয়ে ওদের ধরে ফেলল| 23 মীখার সঙ্গের লোকরা দানদের দিকে চেয়ে চেঁচিয়ে উঠল| দানরা ঘুরে দাঁড়িয়ে মীখাকে বলল, “ব্যাপারটা কি? তোমরা চেঁচাচ্ছ কেন?” 24 মীখা তাদের বলল, “তোমরা দানরা আমার মূর্ত্তিগুলো নিয়ে গেছ| আমি নিজের জন্য ঐগুলো তৈরী করেছি| তোমরা আমার যাজককে নিয়ে গেছ| আমার আর কি-ই বা আছে? তোমরা কোন মুখে আমাকে বলছ, ‘কি হয়েছে?”‘ 25 দান পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা বলল, “তর্ক করো না, চুপ করো| আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বেশ রগচটা| চেঁচালেই এরা তোমায় আক্রমণ কতে পারে| তোমাকে এবং তোমার পরিবারকে হত্যা করতেও পারে|” 26 এই কথা বলে তারা মুখ ফিরিযে চলতে শুরু করল| মীখা জানত তাদের শক্তি অনেক বেশী| তাই সে বাড়ি চলে এল| 27 মীখার তৈরী মূর্ত্তিগুলো দানরা নিয়ে নিলো| মীখার কাছ থেকে যাজককেও তারা নিয়ে গেল| তারপর তারা লয়িশে এল| তারা সেখানকার লোকদের আক্রমণ করল| সেই লোকরা ছিল শান্তিপ্রিয়| তারা কোন আক্রমণ আশা করতে পারে নি| দানরা তরবারি দিয়ে তাদের হত্যা করল এবং শহরটিতে আগুন লাগিয়ে দিল| 28 লয়িশের লোকরা এমন কাউকে পেল না যে তাদের রক্ষা করতে পারবে| তারা সীদোন শহর থেকে অনেক দূরে ছিল, সুতরাং সিদোনীযরা তাদের রক্ষা করতে ছুটে আসতে পারে নি| অরাম শহরের লোকদের সঙ্গে তাদের কোন ভাল সম্পর্ক ছিল না তাই সেখান থেকেও তারা কোন সাহায্য পেল না| লয়িশ শহরটা ছিল বৈত্-রহোব শহরের কাছে একটা উপত্যকায| দানের লোকরা সেখানে একটা নতুন বসতি স্থাপন করে সেই জায়গাটাতেই তারা নিজেদের দেশ বলে গড়ে তুলল| 29 তারা সেই শহরটার একটা নতুন নাম দিল| লয়িশের নাম হল দান| তাদের পূর্বপুরুষ, ইস্রায়েলের পুত্রদের একজন, দানের নামানুসারেই তারা এই নাম রাখল| 30 দান পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা দান শহরে মূর্ত্তিগুলো প্রতিষ্ঠা করল| গের্শোমের পুত্র য়োনাথনকে তারা যাজক করল| গের্শোম হচ্ছে মোশির পুত্র| য়োনাথন ও তার পুত্ররাই ছিল দানদের যাজক| যতদিন না ইস্রায়েলীয়দের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ততদিন পর্য়ন্ত তারা যাজক ছিল| 31 মীখার তৈরী মূর্ত্তিগুলো দানরা পূজা করতো| যতদিন শীলোতে ঈশ্বরের গৃহ ছিল ততদিন সর্বক্ষণই তারা ঐসব মূর্ত্তি পূজো করত|
1 সেই সময়, ইস্রায়েলীয়দের কোন রাজা ছিল না|পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িমের সীমান্তে একজন লেবীয় থাকত| সেই লোকটার একজন দাসী ছিল, তাকে একরকম তার স্ত্রীও বলা যায়| সে ছিল যিহূদার বৈত্লেহম শহরের| 2 কিন্তু সে (দাসীটি) তার প্রতি অবিশ্বস্ত ছিল| সে বৈত্লেহমে যিহূদায় তার পিতার বাড়ি চলে গেল| সে সেখানে চার মাস কাটালো| 3 তারপর তার স্বামী তার কাছে গেলো| সে তার সঙ্গে বেশ ভালোভাবেই কথাবার্তা বলবে ঠিক করেছিল, এই আশায যদি স্ত্রী তার কাছে ফিরে আসে| একজন ভৃত্য ও দুটো গাধা নিয়ে সে মেয়েটির পিতার বাড়ী গেল| তাকে দেখতে পেয়ে মেয়েটির পিতা বেরিয়ে এসে তাকে আদর করে ডাকল| পিতা তো বেশ খুশী হল| 4 মেয়ের পিতা লেবীয়টিকে তার বাড়িতে নিয়ে এল| তাকে সেখানে থাকবার জন্য বলল| লেবীয় সেখানে তিনদিন থেকে গেল| শ্বশুরবাড়িতে সে খাওয়া-দাওযা, পান ভোজন করে আর ঘুমিযে দিন কাটাল| 5 চতুর্থ দিনে তারা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠল| লেবীয় লোকটি চলে যাবার জন্য প্রস্তুত হল| কিন্তু শ্বশুরমশাই জামাতাকে বলল, “আগে কিছু খেযেদেযে নাও, তারপর যেও|” 6 তাই লেবীয় লোকটি ও শ্বশুরমশাই একসঙ্গে খেতে বসল| খাওয়া হয়ে যাবার পর শ্বশুর বলল, “আজকের রাতটা থেকে যাও| আরাম করো, আনন্দ করো| তারপর বিকেল হলে চলে যেও|” সুতরাং তারা দুজন একসঙ্গে খাওয়া দাওযা করল| 7 লেবীয় তারপর যাবার উদ্যোগ করলে শ্বশুর তাকে আর একরাত্রি থাকতে অনুরোধ করল| 8 পঞ্চম দিনে ভোরবেলা লেবীয় ঘুম থেকে উঠে রওনা হবার উদ্যোগ করল| কিন্তু শ্বশুর আবার জামাতাকে বলল, “আগে তো কিছু খাও| আজ বিকাল পর্য়ন্ত বিশ্রাম কর|” অতএব তারা দুজন একসঙ্গে খাওয়া-দাওযা করল| 9 তারপর লেবীয় লোকটি তার দাসী আর ভৃত্যের যাবার উদ্যোগ করলে শ্বশুর বলল, “এখন অন্ধকার হয়ে গেছে| দিন তো একরকম শেষ হয়ে গেছে| তাই বলছি কি, আজকের রাতটা থেকেই যাও| ভালভাবে রাতটা কাটাও| কাল সকাল সকাল উঠে চলে যেও|” 10 এবারে লেবীয় লোকটি আর রাত কাটাতে চাইল না| গাধা দুটো আর দাসীটিকে সঙ্গে নিয়ে সে দূরে য়িবূষ শহরের দিকে চলে গেল| (য়িবূষ জেরুশালেমের আর একটি নাম|) 11 দিন প্রায় শেষ হয়ে গেল| তারা য়িবূষ শহরের কাছাকাছি পৌঁছাল| তখন ভৃত্যটি তার মনিব লেবীয় লোকটিকে বলল, “এই য়িবূষ শহরে আজ রাত কাটানো যাক|” 12 কিন্তু তার মনিব লেবীয় লোকটি বলল, “না, আমরা অপরিচিত শহরের ভেতরে যাব না| ওরা তো ইস্রায়েলের লোক নয়| আমরা গিবিয়া শহরে চলে যাব|’ 13 সে আরও বলল, “চলো গিবিয়া কি রামা - এই দুটো শহরের যে কোন একটায আমরা গিয়ে সেখানে রাত কাটিযে দিতে পারি|” 14 তাই লেবীয় লোকটি তার সঙ্গীকে নিয়ে এগিয়ে চলল| গিবিয়ায় পৌঁছবার সঙ্গে সঙ্গে সূর্য় অস্ত গেল| গিবিয়া হল বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর দখলে| 15 তারা গিবিয়ায় থামল| সেই শহরেই তারা রাত কাটাবে ঠিক করল| শহরের একটা খোলা জায়গায় তারা বসে পড়ল| কিন্তু কেউই তাদের বাড়িতে ডেকে এনে রাত কাটাবার জন্য বলল না| 16 সেদিন সন্ধ্যায় ক্ষেত থেকে একজন বৃদ্ধ লোক শহরে এল| তার বাড়ী ইফ্রয়িমের পাহাড়ী অঞ্চলে হলেও গিবিয়াতেই সে বসবাস করে| (গিবিয়ার লোকরা সকলেই বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর|) 17 বৃদ্ধ লোকটি শহরের কেন্দ্রস্থলে ঐ পথিক লেবীয়কে দেখতে পেল| সে জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কোথায যাবে? তোমরা কোথা থেকে আসছ?” 18 লেবীয় লোকটি বলল, “আমরা যিহূদার বৈত্লেহম শহর থেকে আসছি| আমরা ইফ্রয়িমের পাহাড়ী দেশের সীমানায বাড়ি যাচ্ছি| আমি যিহূদার বৈত্লেহমে এবং প্রভুর গৃহে গিয়েছিলাম| এখন আমি বাড়ী ফিরে যাচ্ছি| কিন্তু আজ রাত্রে কেউই আমাকে তার বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে নি| 19 গাধাগুলোর জন্য খড় আর খাদ্য আমাদের সঙ্গে আছে| ভৃত্য, যুবতী স্ত্রী আর আমার জন্য রুটি আর দ্রাক্ষারসও রযেছে| আমাদের কোন কিছুর অভাব নেই|” 20 বৃদ্ধ লোকটি বলল, “তোমরা আমার বাড়িতে স্বচ্ছন্দে থাকতে পারো| তোমাদের যা দরকার সব দেবো| শুধু একটাই কথা, রাত্রে ঐ খোলা মাঠে যেন তোমরা থেকো না|” 21 এরপর বৃদ্ধলোকটা লেবীয় ও তার সঙ্গীসাথীদের তার বাড়ি নিয়ে গেল| সে তাদের গাধাগুলোকে খাওয়াল| তারা পা ধুয়ে পানাহার সেরে নিল| 22 এদিকে, সঙ্গীদের নিয়ে লেবীয় লোকটি যখন আমোদ-ফূর্তি করছিল, তখন শহরের কিছু বদলোক বাড়িটা ঘিরে ফেলল| তারা দরজায ধাক্কা মারতে লাগল| তারা বাড়ির মালিক ঐ বৃদ্ধ লোকটার নাম ধরে চিত্কার করতে লাগল| তারা বলল, “তোমার বাড়ি থেকে ঐ লোকটাকে বের করে দাও| আমরা ওর সঙ্গে য়ৌন কার্য়্য় করবো|” 23 বৃদ্ধলোকটি বেরিয়ে এসে বদলোকগুলোকে বলল, “শোন বন্ধুরা, অমন মন্দ কাজ কোরো না| লোকটি আমার অতিথি| এরকম জঘন্য পাপ কাজ করো না| 24 এদিকে দেখ, এ হচ্ছে আমার মেয়ে| একটি কুমারী| একে আমি তোমাদের জন্য বের করে আনব| তোমরা যেভাবে খুশী একে ব্যবহার করো, আমি তার উপপত্নীকেও তোমাদের জন্য বের করে আনব| তার সঙ্গে এবং আমার মেয়ের সঙ্গে যা খুশী করো আপত্তি করব না| কিন্তু আমার অতিথির বিরুদ্ধে তোমরা এমন জঘন্য পাপ কাজ করো না|” 25 কিন্তু বদ লোকগুলো সেসব কথায় কান দিল না| শেষ পর্য়ন্ত লেবীয় লোকটি তার দাসী বা উপপত্নীকে বাড়ি থেকে বের করে তাদের কাছে এনে দিল| তারা তাকে আঘাত করল এবং সারারাত ধরে ধর্ষণ করল| ভোর বেলায তাকে ছেড়ে দিল| 26 রাত পোযালে মেয়েটি বাড়িতে ফিরে এল| যেখানে তার স্বামী ছিল| তার দোরগোড়ায সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল| দিনের বেলা পর্য়ন্ত সে সেখানে এইভাবে পড়ে রইল| 27 পরদিন খুব সকালে লেবীয় লোকটি ঘুম থেকে উঠল| বাড়ি যেতে হবে এবার| বেরবে বলে দরজা খুলল, আর সেখানে চৌকাঠের উপর একটা হাত এসে পড়ল| পড়ে রযেছে তার দাসী| দরজার গোড়ায সে পড়ে আছে| 28 লেবীয় লোকটি তাকে বলল, “ওঠো আমাদের যেতে হবে|” কিন্তু কোনো সাড়া মিলল না| সে মারা গিয়েছিল|গাধার পিঠে তাকে শুইযে লেবীয় লোকটি বাড়ি চলে গেল| 29 বাড়ি ফিরে সে একটি ছুরি দিয়ে দাসীটির দেহকে কেটে 12টি টুকরো করল| তারপর ইস্রায়েলীয়রা যে সব জায়গায় বাস করত সে সব জায়গায় ঐ 12টি টুকরো পাঠিয়ে দিল| 30 যারা দেখল তারা প্রত্যেকেই বলল, “এরকম কাণ্ড ইস্রায়েলে আগে কখনও ঘটে নি| যেদিন আমরা মিশর থেকে চলে আসি সেদিন থেকে আজ পর্য়ন্ত এরকম কাজ কখনও হয় নি এবং দেখাও যায় নি| এ বিষযে আলোচনা করতে হবে| ঠিক করতে হবে আমাদের কি করা উচিত্|”
1 সুতরাং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা একত্র হল| তাদের উদ্দেশ্য হল মিস্পা শহরে প্রভুর সামনে দাঁড়ানো| তারা দান থেকে বের-শেবা পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের সব জায়গা থেকেই এসেছিল| এমনকি ইস্রায়েলীয়রা গিলিয়দ শহর থেকেও এসেছিল| 2 ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠী সমস্ত প্রধানরা উপস্থিত ছিল| ঈশ্বরের ভক্তদের প্রকাশ্য জনসভায তারা উপস্থিত ছিল| সেখানে 4,00,000 সৈন্য তরবারি হাতে সামিল হয়েছিল| 3 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা জানতে পারল ইস্রায়েলীয়রা মিস্পায সব জড়ো হয়েছে| ইস্রায়েলীয়রা বলল, “কি করে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটল আমাদের সব বল|” 4 নিহত মেয়েটির স্বামী কি হয়েছিল সব বলল| সে বলল, “আমার দাসীকে নিয়ে আমি বিন্যামীনদের গিবিয়া শহরে এসেছিলাম| সেখানে আমরা রাত কাটিযেছিলাম| 5 রাতের বেলা গিবিয়া শহরের প্রধানরা আমি যে বাড়িতে ছিলাম সেখানে এল| তারা বাড়িটাকে ঘিরে ফেলে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল| তারা আমার দাসীকে ধর্ষণ করেছিল| তাতে সে মারা গেল| 6 তারপর আমি আমার দাসীর দেহটাকে টুকরো টুকরো করলাম এবং ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেককে একটা করে টুকরো পাঠিয়ে দিলাম| যে সমস্ত প্রদেশ আমরা পেয়েছিলাম সেই সব জায়গাতেই আমার দাসীর 12টি দেহ খণ্ড পাঠিয়ে দিয়েছিলাম| পাঠিয়েছিলাম এই জন্যই, যে দেখাতে চেয়েছিলাম বিন্যামীনদের লোকরা ইস্রায়েলে এরকম কদর্য় কাজ করেছে| 7 “এখন তোমরা ইস্রায়েলীয়রা বলো আমাদের কি করা উচিত্| এ বিষযে তোমাদের মতামত কি বলো|” 8 তখন সকলে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে উঠে বলল, “আমরা কেউ বাড়ি যাব না| না, আমাদের মধ্যে একজনও বাড়ি ফিরে যাবে না| 9 এখন আমরা গিবিয়া শহরের প্রতি কি করব তা বলছি| আমরা ঘুঁটি চেলে জেনে নেব ঈশ্বর ঐ লোকদের জন্য আমাদের দিয়ে কি করাতে চান| 10 আমরা ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী থেকে প্রতি 100 জনের মধ্যে 10 জন করে লোক বেছে নেব| এইভাবে প্রতি 1,000 জনে 100 জন আর 10,000 জনে 1,000 জন লোক বেছে নেব| এই বাছাই করা লোকরা সৈন্যদের যা যা দরকার সব পাবে| তারপরে তারা বিন্যামীন এলাকার গিবিয়া শহরে পৌঁছাবে| সেখানে যারা ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে জঘন্য কাজ করেছিল ওরা তাদের শাস্তি দেবে|” 11 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক গিবিয়া শহরে জড়ো হল| কি কি করবে সে বিষযে তারা সকলেই আগে একমত হয়ে ঠিক করে নিয়েছিল| 12 ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর সমস্ত লোকরা বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর কাছে দূতের মাধ্যমে খবর পাঠিয়েছিল| খবরটা হচ্ছে: “তোমাদের মধ্যে কিছু লোকরা যে কদর্য় কাজ করেছে সে বিষযে তোমাদের বক্তব্য কি? 13 তোমরা ঐ গিবিয়ার মন্দ লোকদের আমাদের কাছে পাঠিয়ে দাও| আমরা তাদের ধ্বংস করব| ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে যত মন্দ আছে সব আমরা দূর করব|”কিন্তু বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা দূতদের কথায় কান দিল না| বার্তাবাহকেরা ছিল সম্পর্কে তাদেরই আত্মীয| তারাও ছিল ইস্রায়েলীয়| 14 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা তাদের শহরগুলি ছেড়ে গিবিয়ায় চলে গেল| তারা ইস্রায়েলের অন্য পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করবে বলে গিবিয়ায় গেল| 15 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা মোট 26,000 জন সৈন্য পেল| যুদ্ধের জন্য বেশ দক্ষ সৈন্য তারা| তাছাড়া গিবিয়া থেকে পেল আরো 700 জন দক্ষ সৈন্য| 16 এছাড়াও তারা আরো 700 জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈন্য পেয়েছিল| তারা ছিল সব বাঁ-হাতি সৈন্য| এমনকি তারা একটা চুল লক্ষ্য করে অব্যর্থভাবে পাথর ছুঁড়তে পারত এবং লক্ষ্যভ্রষ্ট হত না| 17 ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী বিন্যামীনদের বাদ দিয়ে সংগ্রহ করল মোট 4,00,000 য়োদ্ধা| তাদের সকলের হাতে তরবারি| সকলেই যুদ্ধ বিদ্য়ায সুশিক্ষিত| 18 ইস্রায়েলীয়রা বৈথেল শহরে গিয়ে ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করল, “কোন পরিবারগোষ্ঠী সবচেয়ে আগে বিন্যামীনদের আক্রমণ করবে?প্রভু বললেন, “যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী প্রথমে যাবে|” 19 পরদিন সকালে ইস্রায়েলবাসীরা ঘুম থেকে উঠল| গিবিয়ার কাছে তারা তাঁবু গাড়ল| 20 তারপর ইস্রায়েলের সৈন্যবাহিনী বিন্যামীন সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে পড়লো| গিবিয়াতে ইস্রায়েল সেনাবাহিনী বিন্যামীন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল| 21 গিবিয়া থেকে বিন্যামীনবাহিনী বের হয়ে এলো| সেদিন তারা ইস্রায়েলবাহিনীর 22,000 সৈন্যকে হত্যা করল| 22 ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুর কাছে গেল| সন্ধ্যা পর্য়ন্ত তারা ক্রন্দন করল| প্রভুকে তারা জিজ্ঞাসা করল, “আমরা কি আবার বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করব? ওরা তো আমাদের আত্মীযস্বজন|”প্রভু উত্তর দিলেন, “যাও, তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর|” ইস্রায়েলের লোকরা এ ওকে উত্সাহ দিতে লাগল| তারপর প্রথম দিনের মতো এবারও তারা যুদ্ধ করতে বেরিয়ে পড়ল| 23 24 এবার ইস্রায়েল বাহিনী বিন্যামীন বাহিনীর কাছাকাছি এসে পড়ল| এটা ছিল যুদ্ধের দ্বিতীয় দিন| 25 বিন্যামীন বাহিনী গিবিয়া থেকে বেরিয়ে এসে দ্বিতীয় দিনে ইস্রায়েল বাহিনীকে আক্রমণ করল| এবারে বিন্যামীন সৈন্যরা আরও 18,000 ইস্রায়েল সৈন্যকে হত্যা করল| এই সব ইস্রায়েলীয় সৈন্য ছিল প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত| 26 তখন সমস্ত ইস্রায়েলবাসীরা বৈথেল শহরে গেল| সেখানে তারা সবাই বসে পড়ে প্রভুর সামনে কাঁদতে লাগল| সারাদিন তারা কিছু খেল না| এইভাবে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত কেটে গেল| তারা প্রভুকে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করল| 27 ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে একটা প্রশ্ন করল| সেকালে ঈশ্বরের সাক্ষ্যসিন্দুক ছিল বৈথেলে| 28 পীনহস নামে একজন যাজক সেখানে ঈশ্বরের সেবা করত| পীনহস ইলিয়াসরের পুত্র| ইলিয়াসর হারোণের পুত্র| ইস্রায়েলবাসীরা জিজ্ঞাসা করল, “বিন্যামীনের লোকরা আমাদের আত্মীয| আমরা কি আবার তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব? নাকি যুদ্ধ থামিয়ে দেব?”প্রভু বললেন, “যাও| আগামীকাল তাদের পরাজিত করতে আমি তোমাদের সাহায্য করব|” 29 তারপর ইস্রায়েলবাহিনী গিবিয়ার সবদিকে কিছু লোককে লুকিয়ে রাখলো| 30 ইস্রায়েল সৈন্যদল তৃতীয় দিন গিবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেল| আগের মতো এবারেও তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত| 31 বিন্যামীন সৈন্যবাহিনী গিবিয়া থেকে বেরিয়ে এল ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে| ইস্রায়েলবাহিনী তাদের বাধা না দিয়ে সুয়োগ দিতে থাকল যেন তারা ওদের পিছু পিছু তাড়া করে| এই ভাবে তারা কৌশল করে বিন্যামীনদের শহর থেকে অনেক খানি দূরে বের করে আনল|বিন্যামীন সৈন্যরা আগের মত এবারও কিছু ইস্রায়েল সৈন্য হত্যা করতে শুরু করল| তারা প্রায় 30 জন ইস্রায়েলীয়কে হত্যা করল| কয়েকজনকে হত্যা করল মাঠে আর কয়েকজনকে হত্যা করল রাস্তায়| একটা রাস্তা গেছে বৈথেলের দিকে| আর একটা গিবিয়ার দিকে| 32 বিন্যামীন সৈন্যরা বলে উঠল, “আগের মত এবারও আমরা জিতছি!”ইস্রায়েলের লোকরা পালাচ্ছিল, কিন্তু এটা তাদের একটা চালাকি| তারা আসলে ওদের শহর থেকে বের করে রাস্তায় আনতে চাইছিল| 33 সেইমত সকলেই দৌড়াচ্ছিল| তারা বাল্তামর নামে একটা জায়গায় থামল| ইস্রায়েলের কয়েকজন লোক গিবিয়ার পশ্চিম দিকে লুকিয়ে ছিল| এবার তারা বেরিয়ে এসে গিবিয়া আক্রমণ করল| 34 সুশিক্ষিত 10,000 ইস্রায়েলীয় সৈন্য গিবিয়া আক্রমণ করল| জোর লড়াই হল কিন্তু বিন্যামীন সৈন্যরা বুঝতে পারল না তাদের কি হতে চলেছে| 35 প্রভু ইস্রায়েল সৈন্যবাহিনীকে ব্যবহার করে বিন্যামীন সৈন্যদের পরাজিত করলেন| সেদিন ইস্রায়েলের সৈন্যরা 25,100 জন বিন্যামীন সৈন্য হত্যা করেছিল| এই সৈন্যরা সকলেই যুদ্ধবিদ্য়ায শিক্ষিত ছিল| 36 এইবার বিন্যামীনরা বুঝতে পারল যে তারা হেরে গেছে|ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা এবার পিছু হটলো| পিছু হটার কারণ হচ্ছে তারা এবার হঠাত্ আক্রমণ করার কৌশল নিয়েছে| গিবিয়ার কাছাকাছি একটা জায়গায় তারা লুকিয়ে রইল| 37 তারপর, যারা লুকিয়ে ছিল তারা গিবিয়া শহরে ঝাঁপিযে পড়লো| সেখানে তারা সবদিকে ছড়িয়ে গেল আর শহরে প্রত্যেককে তাদের তরবারি দিয়ে হত্যা করল| 38 আত্মগোপনকারীদের সঙ্গে ইস্রায়েলীয়রা একটা মতলব এঁটেছিল| লুকিয়ে থাকা লোকরা একাট বিশেষ ধরণের সংকেত পাঠাবে| তারা তৈরী করবে ধোঁযার মেঘ| 39 বিন্যামীন সৈন্যরা কমবেশী 30জন ইস্রায়েল সেনা হত্যা করেছিল| এতেই তারা বলতে লাগল, “আমরা আগের বারের মতো এবারও জিতছি|” কিন্তু তখনই শহর থেকে ধোঁযার মেঘ উঠতে লাগলো| বিন্যামীনের লোকরা সেদিকে ঘাড় ফিরিযে দেখলো সমস্ত শহরে আগুন লেগেছে| এবার ইস্রায়েলীয়রা আর পেছন ফিরল না, তারা ঘুরে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করতে লাগল| বিন্যামীনের লোকরা ভয় পেয়ে গেল| এবার তারা বুঝতে পারলো, কি তাদের অবস্থা| 40 41 42 বিন্যামীনের সৈন্যবাহিনী এবার পালাতে লাগলো| মরুভূমির দিকে তারা ছুটলো, কিন্তু তারা যুদ্ধ এড়াতে পারল না| ইস্রায়েলীয়রা শহর থেকে বেরিয়ে এসে তাদের হত্যা করল| 43 ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের লোকদের ঘেরাও করে তাদের তাড়িয়ে নিয়ে গেল| তারা তাদের বিশ্রাম নিতে দিল না| গিবিয়ার পূর্ব দিকে ইস্রায়েলীয়রা তাদের হারিযে দিল| 44 সুতরাং 18,000 সাহসী ও শক্তিশালী বিন্যামীন সৈন্য নিহত হল| 45 অবশিষ্ট সৈন্যরা মরুভূমির দিকে ছুটতে লাগলো এবং তারা পৌঁছোল রিম্মোণ শিলা নামক জায়গায়| কিন্তু তাদের মধ্যে 5,000 জন বিন্যামীন সৈন্য ইস্রায়েলীয়দের হাতে রাস্তাতেই মারা গেল| তারা ওদের গিদোম পর্য়ন্ত তাড়া করেছিল| সেখানে ইস্রায়েল সৈন্যবাহিনী আরও 2,000 বিন্যামীনের লোকদের হত্যা করল| 46 সেদিন 25,000 বিন্যামীন সৈন্য নিহত হল| তারা সকলেই তরবারি নিয়ে বীরের মতো লড়াই করেছিল| 47 অপরদিকে, 600 জন বিন্যামীনের লোক মরুভূমির দিকে গেল| রিম্মোণ শিলাতে গিয়ে তারা সেখানে চার মাস থেকে গেল| 48 ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনদের দেশে ফিরে এল| প্রত্যেক শহরে গিয়ে তারা লোকদের হত্যা করল| জন্তু জানোযারদেরও তারা রেহাই দিল না| সামনে যা খুঁজে পেল সব তারা ভেঙ্গে চুরে দিল| যত শহর পেল তার সমস্তই তারা বালিয়ে দিল|
1 মিস্পায ইস্রায়েলীয়রা প্রতিজ্ঞা করল: “বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর ঘরে আমরা কেউ আমাদের মেয়েদের বিবাহ দেব না|” 2 ইস্রায়েলীয়রা বৈথেল শহরে গেল| সেখানে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত তারা ঈশ্বরের কাছে বসে রইল| আকুল হয়ে কেঁদে কেঁদে তারা বলল, “হে প্রভু, ইস্রায়েলবাসীদের তুমিই ঈশ্বর| 3 তাহলে এমন বিপদ হল কেন? কেন ইস্রায়েলীয়দের একটা পরিবারগোষ্ঠীকে পাওয়া যাচ্ছে না?” 4 পরদিন ভোরে ইস্রায়েলীয়রা একটা বেদী তৈরী করল| সেই বেদীতে তারা ঈশ্বরের কাছে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করল| 5 তারপর ইস্রায়েলীয় লোকরা বলল, “ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে এমন কোন পরিবার কি আছে যারা প্রভুর সামনে আমাদের এই প্রার্থনায আসে নি?” এরকম জিজ্ঞাসার কারণ হচ্ছে তারা বেশ সাংঘাতিক ধরণের একটা প্রতিজ্ঞা করেছিল| তাদের প্রতিজ্ঞা ছিল অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গে যদি কেউ মিস্পা শহরে য়োগ না দেয তবে তাকে হত্যা করা হবে| 6 ইস্রায়েলীয়রা তাদের আত্মীয বিন্যামীনদের জন্য দুঃখ বোধ করল| তারা বলল, “আজ ইস্রায়েল থেকে একটি পরিবারগোষ্ঠী পৃথক করা হয়েছে| 7 আমরা প্রভুর কাছে একটি শপথ করেছি, কোন বিন্যামীন পুরুষের সঙ্গে আমরা আমাদের মেয়েদের বিবাহ দেব না| কি করে আমরা নিশ্চিত জানব যে বিন্যামীনদের বিয়ে হচ্ছে?” 8 ইস্রায়েলীয়রা জানতে চাইল, “ইস্রায়েলীয়দের কোন পরিবারগোষ্ঠী এখানে এই মিস্পায আসে নি? আমরা এখানে প্রভুর সামনে সমবেত হয়েছি| নিশ্চয়ই একটা পরিবার এখানে আসে নি|” তারা দেখল, যাবেশ-গিলিয়দ থেকে কেউই সেখানে আসে নি| 9 ইস্রায়েলীয়রা গুনে দেখল কে কে এসেছে আর কে কে আসে নি| দেখল যাবেশ গিলিয়দ থেকে কেউই সেখানে আসে নি| 10 তারা যাবেশ গিলিয়দে 12,000 সৈন্য পাঠাল| সৈন্যদের তারা বলে দিল, “যাবেশ গিলিয়দে গিয়ে সেখানকার প্রতিটি লোককে তরবারি দিয়ে হত্যা করবে| মেয়েদের আর বাচ্চাদের তোমরা ছেড়ে দেবে না| 11 এ কাজ তোমাদের করতেই হবে| যাবেশ গিলিয়দের প্রত্যেককে তোমরা হত্যা করবে, তাছাড়া যে সব মেয়েদের কারো না কারো সাথে য়ৌন সম্পর্ক আছে তাদেরও হত্যা করবে| তবে যে সব মেয়ের কোন পুরুষের সঙ্গে এমন সম্পর্ক হয় নি তাদের হত্যা করবে না|” সৈন্যরা তাই করল| 12 ঐ 12,000 সৈন্য যাবেশ গিলিয়দে 400 জন এমন মেয়ের দেখা পেল যারা কোন পুরুষের সঙ্গে এরকম সম্পর্ক স্থাপন করে নি| সৈন্যরা তাদের শীলোর শিবিরে নিয়ে এলো| শীলো কনানদের দেশে অবস্থিত| 13 তারপর ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীন লোকদের কাছে খবর পাঠাল| তারা বিন্যামীনের লোকদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে চাইল| বিন্যামীনের লোকরা ছিল রিম্মোণ শিলায| 14 বিন্যামীনরা তাই শুনে ইস্রায়েলে ফিলে এল| ইস্রায়েলীয়রা তাদের কাছে যাবেশ গিলিয়দের সেই সব মেয়ে দিল যাদের তারা মারে নি| কিন্তু বিন্যামীনদের সংখ্যার তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা বেশ কম ছিল| 15 ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনদের জন্য দুঃখ করল| তাদের দুঃখের কারণ ঈশ্বর বিন্যামীনদের অন্যান্য ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠী থেকে আলাদা করে দিয়েছেন| 16 ইস্রায়েলীয়দের প্রবীণরা বলল, “বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর মেয়েদের সব হত্যা করা হয়েছে| সুতরাং যে সব বিন্যামীন সন্তান বেঁচে আছে তাদের জন্য কিভাবে পত্নীর ব্যবস্থা করা যায়? 17 যেসব বিন্যামীন সন্তান এখনও বেঁচে রযেছে তাদের বংশ রক্ষা করার জন্য সন্তানসন্ততির অবশ্য প্রযোজন| এটা করতেই হবে, নইলে ইস্রায়েলীয়দের একটা পরিবারগোষ্ঠী তো একেবারে লোপ পেয়ে যাবে| 18 কিন্তু আমাদের মেয়েদের সঙ্গে তো বিন্যামীন সন্তানদের বিয়ে হতে পারে না| আমরা এই নিয়ে প্রতিশ্রুতি নিয়েছি| আমরা প্রতিশ্রুতি নিয়েছি যে, ‘বিন্যামীনদের ঘরে যে মেয়ে দেবে সে শাপগ্রস্ত হবে|’ 19 তাই আমরা একটা পরিকল্পনা করেছি| শীলো শহরে প্রভুর জন্য এই সময় একটা উত্সব হয়| প্রতি বছরই সেখানে উত্সব পালিত হয়| (শীলো হচ্ছে বৈথেলের উত্তরে, আর বৈথেল থেকে শিখিমের দিকে যে রাস্তা চলে গেছে তার পূর্বদিকে| তাছাড়া লবোনা শহরের দক্ষিণেও শীলো শহরটা পড়বে|) 20 প্রবীণরা তাদের পরিকল্পনাটি বিন্যামীন সন্তানদের বলল| তারা বলল, “যাও, দ্রাক্ষাক্ষেতে গিয়ে লুকিয়ে পড়| 21 উত্সবের সময় শীলোর যুবতীরা কখন নাচতে আসবে সেদিকে খেযাল করবে| তারপর যখনই তারা আসবে তখন দ্রাক্ষা ক্ষেতের লুকানো জায়গা থেকে তোমরা বেরিয়ে আসবে| প্রত্যেকেই একটি করে যুবতী ধরে নেবে| তারপর ওদের নিয়ে বিন্যামীনদের দেশে গিয়ে বিয়ে করবে| 22 এবং যদি মেয়েদের পিতা কিংবা ভাইরা আমাদের কাছে নালিশ জানায়, তখন আমরা বলব, ‘বিন্যামীনদের ওপর তোমরা সদয হও| তারা ঐ মেয়েদের বিয়ে করুক| তারা তোমাদের মেয়েদের নিয়েছে, তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে নি| তারা মেয়েদের গ্রহণ করেছে| সুতরাং ঈশ্বরের কাছে তোমরা যে প্রতিশ্রুতি করেছিলে তা ভঙ্গ করো নি| তোমরা প্রতিশ্রুতি করেছিলে যে ঐ মেয়েদের সঙ্গে ছেলেদের বিয়ে দেবে না| বিন্যামীনদের তোমরা মেয়ে দাও নি| বরং তারাই তোমাদের কাছ থেকে মেয়েদের নিয়ে গেছে| সুতরাং তোমরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ কর নি|”‘ 23 এই ভাবেই বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীরা কাজ করল| যুবতীরা যখন নাচছিল, প্রত্যেক পুরুষ তাদের একজন করে নিয়ে নিল| তাদের তুলে নিয়ে তারা বিয়ে করল| নিজেদের দেশে তারা ফিরে গেল| বিন্যামীনরা আবার সেই দেশে শহরগুলি গড়ল এবং সেই শহরগুলিতে বসবাস করতে লাগল| 24 তারপর ইস্রায়েলীয়রা ঘরে ফিরে গেল| তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের দেশে ও পরিবারগোষ্ঠীর কাছে ফিরে গেল| 25 সেই সময় ইস্রায়েলীয়দের কোন রাজ্য ছিল না| তাই যে যা ঠিক মনে করত তাই করত|
1 বহুকাল আগে বিচারকদেররাজত্ব কালে একবার বেশ খারাপ সময় এসেছিল| সেই সময় দেশে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছিল| ইলীমেলক নামে এক জন লোক যিহূদার বৈত্লেহম থেকে চলে গিয়েছিল| সে স্ত্রী ও দুই পুত্রকে নিয়ে পাহাড়ি দেশ মোয়াবে চলে গিয়েছিল| 2 তার স্ত্রীর নাম ছিল নয়মী আর দুই পুত্রের নাম মহলোন ও কিলিয়োন| এরা সব বৈত্লেহমের ইফ্রাথীয় পরিবারের| এরা পাহাড়ি দেশ মোয়াবে বসবাস করতে লাগল| 3 তারপর এক দিন নয়মীর স্বামী ইলীমেলক মারা গেল| নয়মী আর তার দুই পুত্র থেকে গেল| 4 উভয় পুত্ররই মোয়াব দেশের কন্যাদের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল| এক জনের স্ত্রীর নাম অর্পা, আরেকজনের নাম রূত্| তারা দশ বছর মোয়াবে বাস করেছিল| 5 মহলোন এবং কিলিয়োন মারা গেল| স্বামী আর পুত্রদের হারিয়ে নয়মী একাই পড়ে রইল| 6 পাহাড়ি দেশ মোয়াবে থাকার সময় নয়মী শুনল প্রভু তাঁর লোকদের সাহায্য করেছিলেন| তিনি যিহূদার লোকদের খাদ্য দিয়েছিলেন শুনে নয়মী ঠিক করলো, মোয়াব ছেড়ে সে দেশে ফিরে যাবে| তার পুত্রবধূরাও তার সঙ্গে য়েতে চাইল| 7 তারা সে দেশ ছেড়ে পায়ে হেঁটে যিহূদায় ফিরে আসার জন্য রওনা হল| 8 নয়মী তার পুত্রবধূদের বলল, “তোমরা দুজনেই দেশে মায়ের কাছে চলে যাও| আমার সঙ্গে আর আমার পুত্রদের সঙ্গে তোমরা খুবই ভাল ব্যবহার করে এসেছো| তাই আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করি তিনিও য়েন তোমাদের প্রতি সদয় হন| 9 আমি আরও প্রার্থনা করি, তিনি য়েন তোমাদের স্বামী আর সুন্দর একটি সুখের ঘরের ব্যবস্থা করে দেন|” এই বলে নয়মী তাদের চুম্বন করলো| তারা কাঁদতে লাগল| 10 পুত্রবধূরা বলল, “কিন্তু আমরা আপনার সঙ্গে আপনার পরিবারেই য়েতে চাই|” 11 নয়মী বলল, “না, মেয়েরা, তোমরা তোমাদের বাড়ীতেই ফিরে যাও| আমার সঙ্গে গিয়ে কি হবে?” আমি তো তোমাদের কোনো উপকার করতে পারব না| আমার কোনো পুত্র নেই য়ে তোমাদের বিয়ে করবে| 12 যাও, ঘরে ফিরে যাও| আমি আর এই বৃদ্ধ বয়সে বর জোটাতে পারবো না| এমনকি নতুন করে বিয়ে করার কথা ভাবলেও আমি তোমাদের উপকার করতে পারব না| ধরো, রাত্রেই আমি গর্ভবতী হলাম, ধরো আমার দু-দুটো পুত্রও হয়ে গেল, কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হবে না| 13 যতদিন না তারা বিয়ের য়োগ্য হচ্ছে ততদিন তোমাদের অপেক্ষা করতে হবে| কিন্তু আমি তোমাদের এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে বলতে পারি না| সত্যিই এসব ভাবলে মনে কষ্ট হয| এমনিতেই আমি যথেষ্ট দুঃখিত| কারণ প্রভু আমার বিরুদ্ধে অনেক কিছু করেছেন|” 14 এই কথা শুনে তারা আবার কান্নাকাটি শুরু করল| তারপর এক সময় অর্পা নয়মীকে চুম্বন করে বিদায় নিল| কিন্তু রূত্ তাকে জড়িয়ে ধরেই থেকে গেল| 15 নয়মী বলল, “তোমার বড়জা নিজের লোকের কাছে এবং তার নিজের দেবতাদের কাছে চলে গেল|” তোমারও তাই করা উচিত্|” 16 রূত্ বলল, “আমাকে তুমি তাড়িয়ে দিয়ো না মা! আমাকে দেশে ফিরে য়েতে তুমি জোর কর না| আমি তোমার কাছেই থাকবো| তুমি যেখানে যাবে, আমিও সেখানে যাব| তুমি যেখানে শোবে, আমি সেখানেই শোব| যারা তোমার নিজের লোক, তারা আমারও নিজের লোক| তোমার ঈশ্বর হবেন আমারও ঈশ্বর | 17 তোমার মৃত্যু যেখানে, আমারও মৃত্যু সেখানে| সেখানেই হবে আমার কবর| এই আমার প্রতিশ্রুতি| যদি আমি আমার প্রতিশ্রুতি না রাখি, প্রভু আমায শাস্তি দেবেন| একমাত্র মৃত্যু ছাড়া কেউ আমাকে তোমার কাছ থেকে সরিয়ে নিতে পারবে না|” 18 নয়মী বুঝলো রূত্ ভীষণ ভাবে তার সঙ্গে য়েতে ইচ্ছুক| সে আর রূতকে কিছু বলল না| 19 নয়মী আর রূত্ বেরিয়ে পড়ল| য়েতে য়েতে তারা এসে পড়ল বৈত্লেহমে| বৈত্লেহমে পা দিতেই সেখানকার লোকরা তাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠলো| তারা বলল, “এই কি নয়মী?” 20 নয়মী তাদের বলল, “তোমরা আমাকে নয়মী বলে ডেকো না| আমাকে তোমরা মারা বলেই ডাকো| এই নামেই তোমরা আমাকে ডাকবে, কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার জীবন দুঃখে ভরে দিয়েছেন| 21 যখন চলে গিয়েছিলাম তখন যা চেয়েছি সবই পেয়েছিলাম| কিন্তু আজ প্রভু আমার জন্যে নিজের দেশ ছাড়া আর কিছুই দেন নি| প্রভু আমায শুধু দুঃখই দিয়েছেন| তাই কেন তোমরা আমাকে ‘সুখী’ বলে ডাকবে? সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমায় অশেষ কষ্ট দিয়েছেন|” 22 এই ভাবে নয়মী ও তার মোয়াবীয়া পুত্রবধূ রূত্ পাহাড়ি দেশ মোয়াব থেকে ফিরে এল| এই দুজন নারী যখন বৈত্লেহমে এল তখন সেখানে বার্লি শস্য তোলার পালা শুরু হয়েছে|
1 বৈত্লেহমে এক জন ধনী বাস করত| তার নাম বোয়স| ইলীমেলক পরিবারের অন্তর্গত নয়মীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে বোয়স ছিল এক জন| 2 এক দিন রূত্ নয়মীকে বলল, “আমি ভাবছি, মাঠে মাঠে একটু ঘুরে বেড়াই| এমনি করেই হয়তো এক দিন এমন কাউকে পাব য়ে আমায় দয়া করবে, য়ে আমায় মাঠের পড়ে থাকা শস্যের দানা তুলে নিতে বলবে|” 3 নয়মী বলল, “আচ্ছা বাছা, যাও|”রূত্ মাঠের দিকে চলে গেল| যারা সেখানে শস্য কাটছে তাদের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরল| ক্ষেতের পড়ে থাকা শস্যগুলো সে সংগ্রহ করল|ঘটনাএমে এরকম একটা মাঠের মালিক ছিল বোয়স| বোয়স ছিল ইলীমেলক পরিবারের এক জন| 4 এক দিন বৈত্লেহম থেকে বোয়স তার জমিতে চলে এলো| চাষীদের সে আদর ভালবাসা জানিয়ে বলল, “প্রভু তোমাদের সহায় হোন!”চাষীরাও বলল, “প্রভু আপনার মঙ্গল করুন!” 5 বোযসের একজন ভৃত্য চাষীদের কাজের তদারকি করছিল| রূতকে দেখতে পেয়ে বোয়স ভৃত্যকে জিজ্ঞাসা করল, “এ কাদের মেয়ে?” 6 ভৃত্যটি বলল, “মেয়েটি একজন মোয়াবী| সে নয়মীর সঙ্গে মোয়াব থেকে এসেছে|” 7 আজ খুব ভোরবেলা সে আমার কাছে আসে অনুমতি চাইতে যাতে চাষীদের পিছু পিছু ঘুরে মাঠ থেকে সে শস্য কুড়িয়ে নিতে পারে| সেই সকাল থেকে সে এই মাঠে রযেছে| ঐ তো ওখানে তার বাড়ী|” 8 বোয়স তখন রূতকে বলল, “শোনো মেয়ে, তুমি এই ক্ষেতেই থেকে যাও এবং তোমার জন্য শস্য কুড়িযে নিও| অন্য কোথাও আর তোমাকে য়েতে হবে না| আমার ক্ষেতের দাসীদের সঙ্গে সঙ্গে তুমি ঘুরবে| 9 কোন্ কোন্ জমিতে তারা যাচ্ছে দেখবে, তাদের সঙ্গে থাকবে| যুবকদের আমি সাবধান করে দিচ্ছি, তারা য়েন তোমায় বিরক্ত না করে| পিপাসা পেলে আমার লোকরা য়ে মগ ব্যবহার করে তুমিও তা ব্যবহার করতে পারো| বুঝলে?” 10 রূত্ মাথা নীচু করে শ্রদ্ধা জানাল| সে বোয়সকে বলল, “আমার মতো এক জন সামান্য মেয়েকেও আপনি লক্ষ্য করেছেন, এতে আমি খুবই অবাক হয়ে গেছি! যদিও আমি একজন অপরিচিত কিন্তু তবুও আপনি আমার প্রতি কত সদয়|” 11 বোয়স উত্তর দিল, “তোমার শাশুড়ি নয়মীকে তুমি কি রকম সেবা করেছ আমি সবই জানি| আমি জানি তোমার স্বামী মারা গেলেও তুমি তাকে কত সাহায্য করেছ| আর আমি এও জানি মাতাপিতা, নিজের দেশ সব কিছু ছেড়ে তুমি এখানে চলে এসেছ| এদেশের কাউকেই তুমি চেন না, তা সত্ত্বেও নয়মীর সঙ্গে তুমি এদেশে এসেছ| 12 তোমার সত্ কাজের জন্য প্রভু তোমায় পুরস্কার দেবেন| তুমি যা কিছু করেছ তার জন্য প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাকে সম্পূর্ণ ভাবে পুরস্কৃত করবেন| তুমি সুরক্ষার জন্য তাঁর কাছে এসেছো, সুতরাং তিনি তোমাকে রক্ষা করবেন|” 13 রূত্ বলল, “আপনি আমাকে খুবই দয়া করেছেন| আমি তো এক জন দাসী মাত্র, তাও আপনার দাসীদের মধ্যে কারও সমান নই| তবুও আপনি কত দরদের কথা বলেছেন, আমায সান্ত্বনা দিয়েছেন|” 14 দুপুরের খাওয়ার সময় বোয়স রূতকে বলল, “এদিকে এসো! আমাদের রুটি থেকে তুমিও কয়েকটা খাও| সিরকায় তোমার রুটি ডুবিয়ে নাও|”রূত্ চাষীদের পাশে বসে গেল| বোয়স তাকে সেঁকা শস্য দিল| রূত্ পেট ভরে খেল| কিছু খাবার পড়ে রইলো| 15 খাবার পর রূত্ আবার কাজে মেতে উঠলো|বোয়স ভৃত্যদের বলল, “শস্যের গাদার পাশ থেকেও রূতকে দানা কুড়িয়ে নিতে দিও| ওকে বাধা দিও না| 16 কিছু দানা ভরা শীষ তার জন্যে ফেলে দিয়ে তার কাজটা বরং আরও সহজ করে দিও| হ্যাঁ তাকে শস্য কুড়োতে দিও, বাধা দিও না|” 17 সন্ধ্যে পর্য়ন্ত রূত্ মাঠে কাজকর্ম করত| কাজের পর ভুষি থেকে শস্যদানা বেছে আলাদা করে রাখত| সে প্রায় ১/২ বুশেল বার্লি পেত| 18 সে ঐ শস্যগুলি নিয়ে শহরে তার শাশুড়ীর কাছে য়েত| তাছাড়া তাকে পাতের বাড়তি খাবারটাবারও খেতে দিত| 19 শাশুড়ী তাকে জিজ্ঞাসা করল, “এই সব শস্য কোত্থেকে পেলে? তুমি কোথায় কাজ করো? তোমার প্রতি য়ে সদয় হয়েছিল তার কল্যাণ হোক|”তখন রূত্ কার কাছে কাজ করছে বলল| সে বলল, “যার কাছে কাজ করছি তার নাম বোয়স|”নয়মী পাত্রবধূকে বলল, “প্রভু তার মঙ্গল করুন| কি জীবিত, কি মৃত সকলের প্রতিই তাঁর দয়ার শেষ নেই|” 20 তারপর সে রূতকে বলল, “বোয়স আমাদের আত্মীয়দের এক জন| বোয়স আমাদের রক্ষাকর্তা|” 21 রূত্ বলল, “বোয়স আমাকে ফিরে আসতে বলেছে| বলেছে কাজ করে য়েতে| বোয়স বলেছে ফসল কাটার কাজ শেষ হওয়া অবধি আমি য়েন তার ভৃত্যদের সঙ্গে ভাল ভাবে কাজকর্ম করি|” 22 নয়মী উত্তর দিল, “বোযসের ভৃত্য দাসীদের সঙ্গে কাজ করাটা তোমার পক্ষে ভাল| অন্য কোনো ক্ষেতে কাজ করলে হযতো কোনো ছেলে তোমার গায়ে হাত দিত|” 23 অতএব রূত্ বোয়সের দাসীদের বার্লি এবং গম কাটার সময় পর্য়ন্ত থেকে গেল| শাশুড়ীর সঙ্গে রূত্ থেকে গেল|
1 এক দিন নয়মী রূতকে বলল, “ওগো মেয়ে, হয়তো তোমার জন্য আমার একটি বর এবং একটি সুন্দর বাড়ী খোঁজা উচিত্| তোমার ভালই হবে|” 2 হয়তো বোয়সই উপযুক্ত পাত্র| সে আমাদের খুব কাছের লোক| তুমি তার দাসীদের সঙ্গে কাজ করো| আজ রাত্রে বোয়স শস্য মাড়াই করার জায়গায য়ব মাড়াই করবে| 3 যাও গা ধুয়ে সাজগোজ করো| বেশ ভাল জামাকাপড় পরো| তারপর তুমি যেখানে শস্য ঝাড়াই হয় সেখানে অবশ্যই যাবে| কিন্তু বোযসের রাতের খাওয়া না হওয়া পর্য়ন্ত সে য়েন তোমায় দেখতে না পায়| 4 খাওয়ার পর সে বিশ্রাম করবে| দেখবে কোথায় সে শোয়| তারপর সেখানে গিয়ে তার পা থেকে ঢাকাটা তুলে সেখানে শুয়ে পড়বে| সে তোমাকে বলে দেবে বিয়ের ব্যাপারে তুমি কি করবে|” 5 রূত্ বলল, “তাই করব|” 6 শস্য মাড়াইয়ের জায়গায় রূত্ চলে গেল| শাশুড়ী যা বলেছে সেই মতো সবই করল| 7 খাওয়া-দাওয়ার পর বোয়স বেশ খুশি হয়ে শস্যের গাদার পাশে শুতে গেল| তারপর রূত্ চুপিচুপি তার কাছে গিয়ে পায়ের চাদরটা তুলে সেখানে শুয়ে পড়লো| 8 পরে, মধ্যরাত্রে ঘুমের মধ্যে বোয়স পাশ ফিরতে গেল আর তার ঘুম ভেঙ্গে গেল| এবং তার পায়ের কাছে শুয়ে থাকা এং জন নারীকে দেখে খুব আশ্চর্য় হয়ে গেল| 9 বোয়স জিজ্ঞাসা করল, “কে তুমি?”নারী বলল, “আমি রূত্, আপনার দাসী| আপনার চাদর আমার গায়ে বিছিয়ে দিন| আপনি আমার রক্ষাকর্তা|” 10 বোয়স বলল, “প্রভু তোমার মঙ্গল করুন| আমার ওপর তুমি যথেষ্ট দয়া করেছ| আগে নয়মীকে তুমি যা দয়া করতে আমাকে তার চেয়ে বেশি দয়া করছ| তুমি এক জন গরীব কিংবা ধনী যুবককে বিয়ে করতে পারতে| কিন্তু তুমি তা কর নি| 11 শোনো যুবতী, ভয় পেও না| তুমি যা চাইছ সে রকমই আমি করব| আমার শহরের সকলেই জানে তুমি খুব ভাল মেয়ে| 12 এটাও সত্যি য়ে, আমি তোমার এক জন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়| কিন্তু আমার চেয়েও ঘনিষ্ঠ লোক তোমার আছে| 13 আজ রাতটা এখানে থাকো| সকাল হলে দেখব সেই লোকটি তোমাকে সাহায্য করতে পারে কি না| যদি করে, খুবই ভাল| আর যদি না করে তাহলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমিই তোমাকে বিয়ে করবো| ইলীমেলকের জমি-জায়গা ছাড়িয়ে নিয়ে তোমার হাতে তুলে দেব| সকাল অবধি তুমি এঃানে থেকে যাও|” 14 সুতরাং সকাল হওয়া পর্য়ন্ত বোযসের পায়ের কাছে রূত্ শুয়ে থাকল| অন্ধকার থাকতে থাকতেই সে যাবার জন্য উঠে পড়লো যাতে লোকে তাকে চিনতে না পারে|বোয়স তাকে বলল, “কাল রাত্রে য়ে তুমি আমার কাছে এসেছিলে সে কথা আমরা গোপন রাখবো|” 15 তারপর বোয়স বলল, “তোমার শালটা আমায় দাও তো| ওষ্টাকে খুলে ধরো|”রূত্ তাই করলো| বোয়স নয়মীকে দেবে বলে আন্দাজে এং বুশেল বার্লি ওজন করল| তারপর রূতের শালে বার্লি মুড়ে তার পিঠে চাপিয়ে দিলো| বোয়স শহরে বেরিয়ে গেল| 16 রূত্ তার শাশুড়ী নয়মীর বাড়ী চলে গেল| নয়মী দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কে ওখানে?”রূত্ ভেতরে গিয়ে বোয়স কি কি করেছে সব নয়মীকে বলল| 17 সে বলল, “বোয়স তোমার জন্যে এই বার্লি উপহার দিয়েছে| সে বলেছে উপহার না নিয়ে য়েন তোমার কাছে না আসি|” 18 নয়মী বলল, “বাছা, ধৈর্য়্য় ধরো| বোয়স যা করবে বলে মনে করে তা না করা পর্য়ন্ত ওর মনে শান্তি নেই| দিন ফুরোবার আগে কি ঘটে আমরা জানতে পারব|”
1 শহরের ফটকের কাছে যেখানে লোকরা সব জড়ো হয়েছে সেখানে বোয়স গেল| সেখানে সে বসে রইল যতক্ষণ না সেই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়টি আসে| এর কথাই সে রূতকে বলেছিল| তারপর এক সময় সেই লোকটি তার সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছিল| বোয়স তাকে ডাকল, “বন্ধু এই য়ে শোনো, এখানে বসো!” 2 তারপর বোয়স কয়েক জন সাথী জোগাড় করল| শহরের দশ জন প্রবীণ লোককে সে ডাকল| তাদের বলল, “বসো!” তারা বসল| 3 তারপর বোয়স সেই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়টিকে বলল, “পাহাড়ি দেশ মোয়াব থেকে নয়মী ফিরে এসেছে| আমাদের আত্মীয় ইলীমেলকের জমি সে বিক্রী করছে| 4 এই শহরের লোকদের ও প্রবীণ ব্যক্তিদের সামনে আমি তোমাকে এই কথা বলছি| যদি তুমি সেই জমি কিনে নিতে চাও, কেনো| আর যদি জমিটা ছাড়িযে নিতে না চাও, তাও বলো| তুমি না পারলে আমিই ছাড়িয়ে নেব|” 5 তখন বোয়স আরও বলল, “নয়মীর জমি কিনে নিলে তুমি মোয়াবীয়া বিধ্বা রূতকেও পেয়ে যাবে| যদি মোয়াবীয়া রূতের সন্তান হয় সেই হবে জমির মালিক| এই ভাবে জমিটা ওদের পরিবারেই থেকে যাবে|” 6 আত্মীয়টি বলল, “আমি ঐ জমি কিনবো না| ওটা তো আমারই হওয়ার কথা| কিনলে আমার নিজের জমিই খোয়াব| ও তুমিই কেনো|” 7 (বহুকাল আগে ইস্রায়েলে কেউ কোনো সম্পত্তি কিনলে বা ছাড়িয়ে নিলে একজন লোক তার জুতো খুলে খদ্দেরকে দিয়ে দিত| এটাই ছিল বেচা-কেনার প্রমাণ|) 8 সেই মতো ঘনিষ্ঠ আত্মীয়টি বলল, “জমি তুমি কিনে নাও|” তারপর সে তার জুতো খুলে বোয়সকে দিল| 9 তখন বোয়স সমবেত লোকদের এবং প্রবীণ ব্যক্তিদের বলল, “তোমরা সকলে সাক্ষী রইলে য়ে আমি ইলীমেলক, কিলিযোন এবং মহলোনের এই সমস্ত জমিজমা নয়মীর কাছ থেকে কিনে নিলাম| 10 সেইসঙ্গে রূতকেও আমার স্ত্রী হিসেবে কিনে নিলাম| এর ফলে মৃত স্বামীর সব সম্পত্তির অধিকার হবে তারই পরিবারের লোকরা| এভাবেই তার নাম তার জমির ও পরিবার থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে না| তোমরা আজ সকলেই সাক্ষী থাকলে|” 11 সকলেই সাক্ষী থেকে গেল| তারা বলল,ইস্রায়েলের গৃহ যারা তৈরীকরেছিল সেই রাহেল এবং লেয়ার মত করে প্রভু য়েন গড়ে তোলেন এই নারীকে য়ে তোমার বাড়ীতে আসছে| তুমি ইফ্রাথাতে শক্তিশালী হও| তুমি বৈত্লেহমেও বিখ্যাত হও| 12 তামর যিহূদার পুত্র পেরসকে জন্ম দিয়েছিল এবং তার পরিবার মহান হয়েছিল| প্রভু য়েন তেমনি করেই তোমাকেও রূতের গর্ভজাত বহু সন্তান দেন| এবং তোমার পরিবারও পেরসের মতোই মহান হয়ে ওঠে| 13 বোয়স রূতকে বিয়ে করলো| প্রভুর আশীর্বাদে রূত্ গর্ভবতী হল| সে একটি পুত্রের জন্ম দিল| 14 শহরের রমনীরা নয়মীকে বলল,প্রশংসা করো প্রভুকে যিনি তোমাকে উপহার হিসেবে এই মহান পুত্র দিলেন| সে ইস্রায়েলে বিখ্যাত হবে| 15 এই তোমাকে পুনর্জীবিত করবে এবং তোমার বৃদ্ধ বয়সে দেখাশোনা করবে| তোমার পুত্রবধূর সুবাদেই তাকে পেলে| তোমারই জন্য সে এই ছেলেকে জন্ম দিয়েছিল| সে তোমায় ভালবাসে এবং সে তোমায় সাতটি ছেলের চেয়ে ঢ়ের বেশি ভালবাসে|” 16 নয়মী ছেলেকে কোলে তুলে নিলো এবং তাকে আদর-যত্ন করল| 17 পাড়া প্রতিবেশীরা তার একটা নাম দিল| এই স্ত্রীলোকরা বলল, “এখন নয়মীর একটি পুত্র আছে!” তারা পুত্রটির নাম রাখল ওবেদ| ওবেদের পুত্রের নাম যিশয়| যিশয়ের পুত্রের নাম দায়ূদ|রূত্ ও বোয়সের পরিবার 18 এই হচ্ছে পেরসের পরিবারের বংশপরিচয়:পেরসের পুত্র হিষ্রোণ| 19 হিষ্রোণের পুত্র রাম| রামের পুত্র অম্মীনাদব| 20 অম্মীনাদবের পুত্র নহশোন| নহশোনের পুত্র সল্মোন| 21 সল্মোনের পুত্র বোয়স| বোয়সের পুত্র ওবেদ| 22 ওবেদের পুত্র যিশয়| যিশয়ের পুত্র দায়ূদ|
1 পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িমের রামা অঞ্চলে ইল্কানা নামে একজন লোক ছিল| ইল্কানা সূফ পরিবার থেকে এসেছিল; তার পিতার নাম ছিল য়িরোহম, য়িরোহমের পিতা হচ্ছে ইলীহূ, ইলীহূর পিতা তোহূ, তোহূর পিতা সূফ| সে ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিল| 2 ইল্কানার দুই স্ত্রী ছিল| একজনের নাম হান্না, অন্য জনের নাম পনিন্না| পনিন্নার সন্তানাদি ছিল, কিন্তু হান্না ছিল নিঃসন্তান| 3 প্রতি বছরই ইল্কানা রামা শহর থেকে শীলোতে চলে যেত| শীলোয গিয়ে সে সর্বশক্তিমান প্রভুর উপাসনা করত ও তাঁকে বলি নিবেদন করত| সেখানে হফ্নি এবং পীনহস যাজক হিসেবে প্রভুর সেবা করত| এরা দুই জন ছিল এলির পুত্র| 4 প্রত্যেকবার ইল্কানা বলি দিয়ে এসে তার একটা ভাগ তার স্ত্রী পনিন্নাকে দিত এবং সে পনিন্নার সন্তানদেরও কিছুটা ভাগ দিত| 5 ইল্কানা আর একটা সমান অংশ হান্নাকেও দিত| প্রভু হান্নার কোলে সন্তান না দিলেও ইল্কানা তাকে বলির ভাগ দিত, কারণ সে হান্নাকে সত্যিই ভালবাসত| 6 পনিন্না সব সময় হান্নাকে বিরক্ত করত| এতে হান্নার খুব মন খারাপ হত| হান্নার সন্তান হয়নি বলে পনিন্না তাকে এই রকম করত| 7 বছরের পর বছর এই ঘটনা ঘটত| যখনই ইল্কানা তার পরিবারের সঙ্গে শীলোয় প্রভুর গৃহে উপাসনা করতে যেত, পনিন্না হান্নাকে বিরক্ত করত| একদিন ইল্কানা সবাইকে যখন বলির ভাগ দিচ্ছিল, হান্না মনের দুঃখে কেঁদে ফেলল| সে কিছুই খেল না| 8 ইল্কানা তাকে বলল, “হান্না, তুমি কাঁদছ কেন? কেন তুমি কিছু খাচ্ছ না? কিসের জন্য তোমায় এমন শুকনো দেখাচ্ছে? তোমার জন্য তো আমি আছি| আমি তোমার স্বামী| দশটি পুত্রের চেয়ে আমাকে তোমার বেশী ভাল বলে বিবেচনা করা উচিত্|” 9 খাওয়া দাওযা এবং পান সেরে হান্না চুপচাপ উঠে পড়ল| সে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে গেল| প্রভুর পবিত্র মন্দিরের দরজার পাশে একটা চেযারে যাজক এলি বসেছিল| 10 দুঃখিনী হান্না প্রভুর কাছে প্রার্থনার সময় খুবই কাঁদল| 11 ঈশ্বরের কাছে সে এক বিশেষ ধরণের মানত করল| সে বলল, “হে সর্বশক্তিমান প্রভু, দেখো আমি বড় দুঃখী| আমাকে ভুলে যেও না| আমাকে মনে রেখ| তুমি যদি আমাকে একটি পুত্র দাও, আমি সেই পুত্রকে তোমাকেই উত্সর্গ করব| সে হবে নাসরতীয়| সে দ্রাক্ষারস বা কোন রকম কড়া পানীয় পান করবে না| কেউ কখনও তার চুল কাটবে না|” 12 অনেকক্ষণ ধরে হান্না প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল| হান্না যখন প্রার্থনা করছিল তখন এলি তার মুখগহ্বরের দিকে দেখছিল| 13 হান্না মনে মনে প্রার্থনা করছিল| সে শব্দ করে কিছু বলছিল না, শুধু তার ঠোঁট দুটো নড়ছিল| এলি মনে করল যে হান্না মাতাল হয়ে গেছে| 14 তাই এলি হান্নাকে বলল, “তুমি খুব বেশী পান করেছ! এখন দ্রাক্ষারস সরিয়ে রাখার সময় হয়েছে|” 15 হান্না বলল, “না মহাশয়, আমি দ্রাক্ষারস বা সুরা কিছুই পান করি নি| আমার হৃদয় তীব্র বেদনায় কাতর| আমি প্রভুর কাছে আমার সব কষ্টের কথা জানাচ্ছিলাম| 16 ভাববেন না যে আমি খারপ মেয়ে| আমি সারাক্ষণ শুধু প্রার্থনাই করছিলাম| কারণ আমার অনেক দুঃখ এবং আমি খুবই বিচলিত|” 17 এলি বলল, “নিশ্চিন্তে বাড়ি যাও| ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমার মনোবাঞ্ছা পূরণ করুন|” 18 হান্না বলল, “আশা করি আমার ওপর আপনি সন্তুষ্ট হয়েছেন|” এই বলে হান্না চলে গেল এবং পরে কিছু মুখে দিল| তারপর থেকে সে আর দুঃখী ছিল না| 19 পরদিন খুব সকালে ইল্কানার বাড়ির সকলে ঘুম থেকে উঠল| তারা সকলে প্রভুর উপাসনা করল| তারপর তারা রামায় ফিরে গেল|ইল্কানা হান্নার সঙ্গে মিলিত হল| প্রভু হান্নাকে মনে রেখেছিলেন| 20 পরের বছর হান্না একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| হান্না পুত্রের নাম রাখল, শমূয়েল| সে বলল, “আমি প্রভুর কাছে এর জন্যে প্রার্থনা করেছিলাম, তাই এর নাম দিয়েছি শমূয়েল|” 21 সেই বছর ইল্কানা শীলোতে গেল| ঈশ্বরের কাছে প্রতিশ্রুতি পালনের জন্যে এবং বলি দিতেই সে সেখানে সপরিবারে গিয়েছিল| 22 কিন্তু হান্না যেতে চাইল না| সে ইল্কানাকে বলল, “যখন পুত্র বড় হবে, শক্ত খাবার-দাবার খেতে শিখবে তখন আমি শীলোতে যাব| শীলোয় গিয়ে প্রভুর কাছে পুত্রকে দান করব| পুত্র হবে নাসরতীয়| সে শীলোতেই থাকবে|” 23 ইল্কানা তার স্ত্রী হান্নাকে বলল, “যা ভাল বোঝ তাই কর| পুত্র বড় না হওয়া পর্য়ন্ত, তার শক্ত খাবার খাওয়ার শক্তি না হওয়া পর্য়ন্ত বাড়িতেই থাকতে পারে| প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করুন|”সুতরাং পুত্র শক্ত খাবার খাওয়ার উপযুক্ত না হওয়া পর্য়ন্ত হান্না পুত্রের সেবা শুশ্রূষার জন্য বাড়িতে থেকে গেল| 24 বালকটি যখন বেশ বড়সড় হল, খাবার চিবোতে শিখল, তখন হান্না তাকে নিয়ে শীলোয প্রভুর গৃহে গেল| সে তিন বছরের একটা ষাঁড়ও সঙ্গে নিল| এ ছাড়াও সে নিল 20 পাউণ্ড ছাঁকা মযদা এবং এক বোতল দ্রাক্ষারস| 25 তারা প্রভুর সামনে গেল| ইল্কানা ষাঁড়টিকে বলি দিল যেমন সে সাধারণতঃ করত| তারপর হান্না এলিকে তার পুত্র দিল| 26 হান্না এলিকে বলল, “মার্জনা করবেন মহাশয়| আমিই সেই মহিলা যে একদিন আপনার কাছে দাঁড়িয়েছিলাম এবং প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম| বিশ্বাস করুন, আমি সত্যি কথাই বলছি| 27 আমি এই ছেলের জন্যেই প্রার্থনা করেছিলাম এবং প্রভু আমার সেই প্রার্থনার উত্তর দিয়েছেন| প্রভু এম্প ছেলেকে আমায় দিয়েছেন| 28 আমি এখন সেই ছেলেকে প্রভুর কাছে উত্সর্গ করছি| সে সারা জীবন তাঁর সেবা করবে|”এই কথা বলে, হান্না ছেলেটিকে সেখানে রাখল এবং প্রভুর উপাসনা করল|
1 হান্না বলল, “প্রভুতেই আমার হৃদয় খুশী| আমি আমার ঈশ্বরে শক্তিশালী! তাই আমি আমার শত্রু দেখে হাসি| আমি তোমার প্রদত্ত পরিত্রাণে খুবই আনন্দিত| 2 প্রভুর মত পবিত্র আর কোন ঈশ্বর নেই| তুমি ছাড়া আর কোন ঈশ্বর নেই| আমাদের ঈশ্বরের মত আর কোন শিলা নেই| 3 আর দম্ভ করো না| গর্বের শব্দ যেন উচ্চারিত না হয় কারণ প্রভু ঈশ্বর সবই জানেন| ঈশ্বরই লোকদের চালনা ও বিচার করেন| 4 বলবান সৈন্যর ধনু ভেঙ্গে যায় এবং দুর্বল লোক শক্তিশালী হয়| 5 অতীতে যাদের প্রচুর খাদ্য ছিল এখন তাদের এক মুঠো খাদ্যের জন্য কঠিন সংগ্রাম করতে হবে| কিন্তু অতীতে যারা ক্ষুধার্ত ছিল তাদের এখন প্রচুর খাদ্য আছে| যে নারী ছিল বন্ধ্যা তার এখন সাতটি সন্তান| কিন্তু যে নারীর বহু সন্তান ছিল এখন সে দুঃখী| কারণ তার সন্তানরা চলে গেছে| 6 প্রভুই মারেন ও বাঁচান, প্রভুই কবরে শাযিত করেন ও উর্দ্ধে তোলেন| 7 প্রভুই কাউকে গরীব করেন, আবার কাউকে ধনে ভরে দেন| কাউকে নম্র করেন, আবার কাউকে সম্মান দেন| 8 প্রভু ধুলি থেকে দরিদ্রদের তোলেন এবং তিনি দুঃখ হরণ করে নেন| তিনি তাদের গুরুত্বপূর্ণ করে তোলেন এবং তাদের রাজকুমারদের সঙ্গে বসান ও তাদের সম্মানীয আসন দেন| প্রভু হচ্ছেন সেই জন যিনি সমগ্র বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন এবং সমগ্র বিশ্ব য়াঁর অধিকারভুক্ত| 9 প্রভু তাঁর পবিত্র লোকদের হোঁচট খাওয়া থেকে রক্ষা করেন| দুষ্ট লোকরা অন্ধকারে ধ্বংস হয়ে যাবে| তাদের ক্ষমতা তাদের বিজয়ী করতে পারে না| 10 প্রভু তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করেন| তিনি তাদের বিরুদ্ধে স্বর্গে বজ্র নির্ঘোষ ঘটাবেন| প্রভু দূরের দেশগুলিরও বিচার করবেন| তিনি তাঁর রাজাকে ক্ষমতা দেবেন এবং তাঁর অভিষিক্ত রাজাকে শক্তিশালী করবেন|” 11 ইল্কানা সপরিবারে তার নিজের দেশ রামায় ফিরে এলো| কিন্তু ছেলেটি শীলোয় থেকে গেল| সেখানে সে যাজক এলির তত্ত্বাবধানে প্রভুর সেবা করেছিল| 12 এলির পুত্ররা ছিল খুব মন্দ, তারা প্রভুকে মানতো না| 13 এমনকি লোকদের সাথে যাজকদের কিরূপ আচার ব্যবহার করা উচিত্ সেই নিয়ে তারা বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাতো না| যাজকদের এইসব কাজ করণীয ছিল; লোক যখন কোন উত্সর্গ আনবে তখন যাজকদের সেই উত্সর্গের মাংস একটা গরম জলের পাত্রে রাখতে হবে| তারপর যাজকের ভৃত্য একটা বিশেষ ধরণের তিন মুখো কাঁটা চামচ আনবে| 14 যাজকের ভৃত্যকে সেই পাত্র থেকে কিছুটা মাংস তুলে নেবার জন্য কাঁটাটা ব্যবহার করতে হবে| সেই কাঁটায যতটুকু মাংস উঠত যাজক শুধু সেই মাংসটুকুই পেত| যেসব ইস্রায়েলীয়রা শীলোতে বলি আনত তাদের সকলের প্রতি যাজকদের এই কাজটা করতে হত| 15 কিন্তু এলির পুত্ররা তা করত না| বেদীর ওপর চর্বির পোড়ানোর আগেই তাদের ভৃত্য ভক্তদের বলত, “যাজককে কিছু মাংস দাও, সেটা ঝলসানো হবে| সে সেদ্ধ মাংস নেবে না|” 16 যদি ভক্ত বলত, “আগে চর্বিটা পোড়াই, তারপর যা চাও দিচ্ছি|” তার উত্তরে ভৃত্য বলত, “না, এক্ষুনি মাংস দাও| না দিলে আমি তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেবো!” 17 এভাবে হফ্নি ও পীনহস প্রভুর জন্য দেওয়া বলিকে অসম্মান করত| সন্দেহ নেই প্রভুর বিরুদ্ধে এটা ছিল খুবই মারাত্মক পাপ| 18 কিন্তু শমূয়েল প্রভুর সেবা করত| সেই তরুণ সহকারী, যাজকের বিশেষ ধরণের জামা এফোদ পরত| 19 প্রতি বছর শমূযেলের মা একটা ছোট পোশাক তৈরী করত এবং সেটা তার জন্য শীলোয় নিয়ে যেত| সে স্বামীর সাথে সেখানে প্রতি বছর বলি দিতে যেত| 20 ইল্কানা আর তার স্ত্রীকে এলি আশীর্বাদ করে বলত, “প্রভু তোমাকে হান্নার মাধ্যমে আরও সন্তান দিক| এরাই হান্নার মানত করা ছেলের জায়গা নেবে|”ইল্কানা তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ী ফিরে গেল| 21 প্রভু হান্নার উপর সন্তুষ্ট হয়েছিলেন| হান্নার তিনটি ছেলে, দুটি মেয়ে হল| এদিকে শমূয়েল তো প্রভুর সেবা করতে করতেই পবিত্র স্থানে বড় হয়ে উঠছিল| 22 এলি বেশ বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলো| শীলোতে সমস্ত ইস্রায়েলের প্রতি পুত্ররা কি করত সে সম্বন্ধে সে প্রাযই শুনতে পেত| এলি এও শুনেছিল যে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দ্বারে যে সব স্ত্রী লোকরা সেবা করত তাদের সঙ্গে তার পুত্ররা শুয়ে রাত কাাত| 23 এলি তার পুত্রদের বলল, “লোকরা তোমাদের সম্বন্ধে নানা কথা আমায় বলছে| কেন তোমরা এত বাজে কাজ করছ? 24 শোন বাছারা, এরকম অন্যায় কাজ কোরো না| প্রভুর লোকরা তোমাদের নিন্দে করছেন| 25 মানুষ যদি মানুষের কাছে পাপ করে ঈশ্বর তাকে ক্ষমা করতে পারেন, কিন্তু প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করলে কে তাকে রক্ষা করবে?”কিন্তু পুত্ররা কেউ তাকে গ্রাহ্য করল না| তাই প্রভু তাদের শেষ করবেন বলে স্থির করলেন| 26 অন্যদিকে শমূয়েল বড় হতে লাগল| সে ঈশ্বর এবং লোকদের কাছে আনন্দদাযক ছিল| 27 ঈশ্বর একজন লোককে এলির কাছে পাঠালেন| লোকটি এলিকে বলল, “প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন, “তোমার পূর্বপুরুষরা ছিল ফরৌণ কূলের ক্রীতদাস, কিন্তু তাদের কাছে আমি দেখা দিয়েছিলাম| 28 ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর ভেতর থেকে আমার যাজকসমূহ হবার জন্য আমি তোমার পরিবারকে নির্বাচিত করেছিলাম| আমার বেদীতে বলি উত্সর্গ দেবার জন্য তোমাদের মনোনীত করেছিলাম| তারাই ধূপ জ্বালাবে, তারাই পরবে এফোদ| আমি এই জন্যই তাদের নির্বাচন করেছিলাম| আমিই তোমাদের পরিবারগোষ্ঠীকে অধিকার দিয়েছি যেন তারাই ইস্রায়েলীয়দের দেওয়া বলির মাংস পায়| 29 তাহলে কেন তোমরা এই সব বলি এবং নৈবেদ্যকে সম্মান করবে না? তুমি আমার চেয়েও তোমার পুত্রদের বেশী সম্মান দিয়ে থাক| আমার লোক, ইস্রায়েলীয়রা আমাকে উত্সর্গীকৃত করবার জন্য যে মাংস নিয়ে আসে তার থেকে সব চেয়ে ভালো অংশগুলি খেয়ে তোমরা মোটা হয়ে যাচ্ছো|’ 30 “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তোমার পিতার পরিবারের লোকরা তাঁকে চিরকাল সেবা করবে| কিন্তু আজ প্রভু এই কথা বলছেন, ‘না, তা আর কখনও হবে না| আমি তাদেরই সম্মান করব যারা আমাকে সম্মান করবে| আর যারা আমায় সম্মান করতে অস্বীকার করবে, তাদের অমঙ্গল হবে| 31 সেই সময় আসছে যেদিন আমি তোমাদের সমস্ত উত্তরপুরুষদের বিনাশ করব| তোমার ঘরে কেউই বৃদ্ধ বয়স পর্য়ন্ত বাঁচবে না| 32 ইস্রায়েলে ভাল জিনিস ঘটবে, কিন্তু খারাপ জিনিসগুলি তোমরা তোমাদের বাড়ীতে ঘটতে দেখবে| তোমার ঘরে কেউ বৃদ্ধ বয়স পর্য়ন্ত বাঁচবে না| 33 একজন মানুষকে আমি বাঁচাব| সেই আমার বেদীতে যাজকের কাজ করবে| সে দীর্ঘজীবী হবে| যতদিন পর্য়ন্ত তার দৃষ্টিশক্তি থাকবে, শরীরে শক্তি থাকবে ততদিন সে বেঁচে থাকবে| তোমার উত্তরপুরুষরা তরবারির কোপে মরবে| 34 আমি তোমাকে এমন একটি চিহ্ন দেখাব যাতে বুঝতে পারবে যে এইসব কথা সত্য| একই দিনে তোমার দুই পুত্র হফ্নি আর পীনহস মারা যাবে| 35 নিজের জন্য আমি একজন বিশ্বস্ত যাজক মনোনীত করব| সে আমার কথা শুনবে এবং আমি যা চাই তাই করবে| আমি তার পরিবারকে শক্তিশালী করব| আমার মনোনীত রাজার সামনে এই যাজক সর্বদা আমার সেবা করবে| 36 তারপর তোমার পরিবারের যারা বেঁচে থাকবে তারা এই যাজকের কাছে এসে মাথা নীচু করে দাঁড়াবে| তারা কযেক টুকরো রূপো অথবা এক টুকরো রুটির জন্য ভিক্ষে চাইবে| তারা বলবে, “আমাকে দয়া করে একটা যাজকের কাজ দাও যাতে দু মুঠো খেতে পারি|”“
1 এলির অধীনে থেকে বালক শমূয়েল প্রভুর সেবা করতে লাগল| সেই সময় প্রভু প্রাযই লোকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতেন না| দর্শন ছিল বিরল| 2 এলির দৃষ্টিশক্তি এত কমে গিয়েছিল যে এক রকম অন্ধই বলা চলে| এক রাত্রিতে সে শুয়ে ছিল, 3 শমূয়েল প্রভুর পবিত্র মন্দিরে শুয়ে ছিল| সেখানেই ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ছিল| প্রভুর প্রদীপ তখনও জ্বলছিল| 4 প্রভু শমূয়েলকে ডাকলেন; শমূয়েল সাড়া দিল, “এই যে, আমি এখানে|” 5 শমূয়েল মনে করেছিল, এলি তাকে ডাকছে| তাই সে ছুটে এলির কাছে গেল| এলিকে বলল, “এই যে আমি| আপনি আমাকে ডাকছিলেন?”এলি বলল, “কই, আমি তো তোমাকে ডাকি নি, তুমি ঘুমোও|”শমূয়েল চলে গেল| 6 আবার প্রভু ডাকলেন, “শমূয়েল!” শমূয়েল ছুটে গেল এলির কাছে| এলিকে বলল, “এই যে আমি| আপনি আমাকে ডাকছিলেন?”এলি বলল, “আমি তোমাকে ডাকি নি| তুমি ঘুমোও|” 7 শমূয়েল তখনও পর্য়ন্ত প্রভুকে জানত না, চিনত না| কারণ প্রভু তখনও তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন নি| 8 প্রভু তৃতীয়বার শমূয়েলকে ডাকলেন| আবার শমূয়েল উঠল, এলির কাছে আবার গেল| সে বলল, “এই যে আমি, আপনি আমাকে ডাকছিলেন?”তখন এলি বুঝতে পারল ছেলেটিকে আসলে বয়ং প্রভুই ডেকেছেন| 9 এলি শমূয়েলকে বলল, “এখন তুমি শোও| এবার যদি কেউ তোমাকে ডাকে, তুমি তার কাছে গিয়ে বলবে, ‘বলুন প্রভু, আপনার দাস শুনছে|”‘শমূয়েল শুতে গেল| 10 প্রভু সেখানে এসে দাঁড়ালেন| আবার তিনি আগের মতো ডাকলেন: “শমূয়েল, শমূয়েল!”এবার শমূয়েল সাড়া দিল: “বলুন প্রভু, আপনার দাস শুনছে|” 11 প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “শোনো, আমি শীঘ্রই ইস্রায়েলে একটা কিছু ঘটাব| যারা এই সম্বন্ধে শুনবে তারা অতিশয বেদনাহত হবে| 12 এলি আর তার পরিবারের বিরুদ্ধে আমি যা যা করবার করব| আমি একেবারে গোড়া থেকে শুরু করে শেষ পর্য়ন্ত সব কিছুই করব| 13 আমি এলিকে বলেছিলাম, ওর পরিবারকে চিরকালের জন্যে আমি শাস্তি দেবই| আমি শাস্তি দেব, কারণ এলি জানত তার পুত্ররা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ করছে| কিন্তু এলি তাদের সামলায নি| 14 তাই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যতই বলি আর শস্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করা হোক্ না কেন, তাতে এলির পুত্রদের পাপ ঘুচবে না|” 15 ভোর পর্য়ন্ত শমূয়েল বিছানায শুয়ে রইল| ভোর হলে সে প্রভুর মন্দিরের দরজা খুলল| দর্শনে কি দেখেছ এবং কি শুনেছে তা এলিকে জানাতে শমূয়েল সাহস করল না| 16 কিন্তু এলি শমূয়েলকে বলল, “শমূয়েল, আমার পুত্র!”শমূয়েল বলল, “আমি এইখানে|” 17 এলি জিজ্ঞাসা করল, “প্রভু তোমায় কি বলেছেন? আমার কাছে কিছু লুকিও না| লুকোলে ঈশ্বর তোমাকে শাস্তি দেবেন|” 18 অগত্যা শমূয়েল এলিকে সব খুলে বলল, কিছুই গোপন করল না|এলি বলল, “তিনি প্রভু, তিনি যা ভাল বুঝবেন তাই করুন| 19 প্রভু শমূযেলের সঙ্গে ছিলেন আর শমূয়েল বড় হয়ে উঠতে লাগল| শমূযেলের একটি কথাকেও প্রভু মিথ্য়া প্রমাণিত হতে দিলেন না| 20 দান থেকে বের্-শেবা পর্য়ন্ত সমস্ত ইস্রায়েলের লোকরা জেনে গেল যে শমূয়েল প্রভুর একজন প্রকৃত ভাববাদী| 21 শীলোতে শমূযেলের সামনে প্রভু প্রাযই দেখা দিতে লাগলেন| প্রভু নিজেকে শমূযেলের কাছে প্রভুর বাক্য় হিসেবে প্রকাশ করলেন|
1 শমূযেলের খবর সমস্ত ইস্রায়েলে জানাজানি হয়ে গেল| এলি খুব বৃদ্ধ হয়ে গেল| তার পুত্ররা প্রভুর চোখের সামনে অন্যায় চালিযে যেতে থাকল|সেই সময় পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে পড়ল| ইস্রায়েলীয়দের তাঁবু পড়ল এবন্ এষরে| পলেষ্টীয়রা তাঁবু গাড়ল অফেকে| 2 পলেষ্টীয়রা ইস্রাযেলকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হল| যুদ্ধ শুরু হল|পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলীয়দের হারিয়ে দিয়ে 4,000 ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের হত্যা করল| 3 ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা তাদের তাঁবুতে ফিরে এল| তাদের প্রবীণরা জানতে চাইল, “কেন প্রভু পলেষ্টীয়দের কাছে আমাদের হারিয়ে দিলেন? চলো আমরা শীলো থেকে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক আনি| তিনি যুদ্ধে আমাদের সহায় হবেন| তিনিই শত্রুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করবেন|” 4 শীলোয লোক পাঠানো হল| তারা প্রভু সর্বশক্তিমানের সাক্ষ্যসিন্দুক নিয়ে ফিরে এল| সিন্দুকের ওপর দুটি করূব, যেন প্রভুর সিংহাসন| এলির দুই পুত্র হফ্নি আর পীনহস সেই পবিত্র সিন্দুক নিয়ে এসেছিল| 5 শিবিরে প্রভুর সেই সাক্ষ্য সিন্দুক আসার সঙ্গে সঙ্গে ইস্রায়েলীয়রা জোরে চেঁচিয়ে উঠল| তাদের চিত্কারে মাটি কেঁপে উঠল| 6 পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলীয়দের সেই চিত্কার শুনতে পেল| তারা বলাবলি করতে লাগল, “ইব্রীযদের শিবিরের লোকরা এত উত্তেজিত কেন?”তারপর পলেষ্টীয়রা জানতে পারল ইস্রায়েলীয় শিবিরে প্রভুর পবিত্র সিন্দুক আনা হয়েছে| 7 পলেষ্টীয়রা ভয় পেয়ে গেল| তারা বলল, “ঈশ্বর ওদের শিবিরে এসেছেন| আমাদের এখন বেশ বিপদ| এরকম তো আগে কখনও হয় নি| 8 আমরা বিপদে পড়েছি| কে আমাদের এই পরাক্রমী দেবতাদের হাত থেকে বাঁচাবে? এই সব দেবতারা মিশরীয়দের নানা ব্যাধি, ভয়ঙ্কর সব অসুখ দিয়েছিলেন| 9 হে পলেষ্টীয়রা, সাহস রাখো| বীরের মতো লড়াই করো| অতীতে ইব্রীযরা ছিল আমাদের ক্রীতদাস| তাই বলছি, বীরের মতো লড়াই চালাও, নইলে তোমরাই তাদের ক্রীতদাস হবে!” 10 তাই পলেষ্টীয়রা প্রবল বিক্রমে যুদ্ধ করে ইস্রায়েলীয়দের পরাজিত করল| ইস্রায়েলীয়দের প্রত্যেকটি সৈন্য তাঁবুতে পালিয়ে গেল| ইস্রায়েলীয়দের পক্ষে এটা একটা মারাত্মক পরাজয় ছিল| 30,000 ইস্রায়েলীয় সৈন্য নিহত হল| 11 পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে এলির পুত্র হফ্নি আর পীনহসকে হত্যা করল| 12 সেদিন বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন লোক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে এল| সে যে কত দুঃখী তা বোঝানোর জন্যে কাপড় চোপড় ছিঁড়ে ফেলল, মাথায় ধূলো মাখল| 13 নগরের ফটকের কাছে এলি একটা চেযারে বসেছিল| এমন সময় ঐ লোকটা শীলোতে এল| ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে এলির খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছিল| সেই জন্য সে বসে বসে প্রতীক্ষা করছিলো| তারপর ঐ বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকটি শীলোয় এসে দুঃসংবাদটা জানালে শহরের সবাই চেঁচিয়ে কাঁদতে শুরু করল| 14 আটানব্বই বছরের বৃদ্ধ এলি চোখে কিছু দেখতে পেতো না| কিন্তু লোকদের চিত্কার করে কান্না তার কানে আসছিল| সে জিজ্ঞেস করল, “লোকরা কিসের জন্য এত চেঁচামেচি করছে?”বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকটি দৌড়ে গিয়ে এলিকে সব জানাল| 15 16 সেই লোকটা এলিকে বলল, “যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আমি এই মাত্র এসেছি| আমি আজ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে এসেছি|”এলি জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছিল বাছা?” 17 বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকটি বলল, “ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের দেখে পালিয়ে গিয়েছিল| ইস্রায়েলের অনেক সৈন্য মারা গেছে| তোমার দুই পুত্রও মারা গেছে| আর পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে গেছে|” 18 লোকটির মুখ থেকে ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুকের কথা শোনা মাত্র এলি চেযার থেকে দরজার কাছেই পড়ে গেল| তার ঘাড় ভেঙ্গে গেল| সে বৃদ্ধ এবং মোটা ছিল, তাই সে বাঁচল না| সে 20 বছর ইস্রাযেলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল| 19 এলির পুত্রবধূ অর্থাত্ পীনহসের স্ত্রী গর্ভবতী ছিল| তার সন্তান প্রসবের সময় হয়ে এসেছিল| সে জানতে পারল ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দূক বেহাত হয়ে গেছে| আরও শুনলো তাঁর শ্বশুর এলি আর স্বামী পীনহসও বেঁচে নেই| খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হল, সন্তান ভূমিষ্ঠ হল| 20 সে যখন প্রায মরনাপন্ন তখন যে সমস্ত স্ত্রীলোক তার দেখাশুনা করছিল তারা বলল, “দুঃখ করো না| তোমার পুত্র হয়েছে|”কিন্তু এলির পুত্রবধূ সে কথায় কান দিল না| 21 সে বলল, “ইস্রায়েলের মহিমা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে|” সে শিশুটির নাম দিল ঈখাবোদ যার অর্থ হল মহিমা নেই| সে এ কাজটি করল কারণ ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক শত্রুর হাতে গিয়েছিল এবং শ্বশুর ও স্বামী দুজনেই মারা গিয়েছিল| 22 সে বলল, “ইস্রায়েলের মহিমা নিয়ে নেওয়া হয়েছিল” কারণ পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে গিয়েছিল|
1 পলেষ্টীয়রা এবন্-এষর থেকে অস্দোদে ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে গেল| 2 পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুকটি দাগোনের মন্দিরে এনে সেটা দাগোনের মূর্ত্তির পাশে রাখল| 3 পরদিন সকালে অস্দোদের লোকরা দেখল দাগোনের মূর্ত্তিটা প্রভুর সিন্দুকের সামনেই মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে আছে|অস্দোদের লোকরা মূর্ত্তিটাকে তুলে তার জায়গায় ঠিক করে রাখল| 4 কিন্তু তার পরের দিন ঘুম থেকে উঠে তারা আবার দেখল, দাগোন আবার মাটিতে পড়ে আছে| প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের সামনে দাগোন উপুড় হয়ে পড়ে রযেছে| এবার দাগোনের মাথা এবং দুটো হাত ভাঙ্গা ছিল এবং চৌকাঠের ওপর পড়ে ছিল| শুধু দেহটাই আস্ত রযেছে| 5 এই কারণে এমনকি আজও দাগোনের মন্দিরের চৌকাঠে কি যাজক কি অন্যান্য লোকরা কেউই পা মাড়াতে চায না| 6 প্রভু এবার অস্দোদের লোকদের এবং তাদের প্রতিবেশীদের জীবন দুর্বিষহ করে তুললেন| প্রভু তাদের য়থেষ্ট বিপদে ফেললেন| তাদের গায়ে জায়গায় জায়গায় টিউমার বা অর্বুদ দেখা দিল| সবই তাঁর আঘাত| তারপর তিনি ওদের দিকে অসংখ্য় ইঁদুর ছেড়ে দিলেন| তারা জাহাজে এবং মাটিতে ছোটাছুটি করতে লাগল| শহরের লোকরা বেশ ভয় পেয়ে গেল| 7 এইসব দেখে অস্দোদের লোকরা বলাবলি করল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক এখানে যেন না থাকে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাদের আর দেবতা দাগোনকে শাস্তি দিচ্ছেন|” 8 অস্দোদের লোকরা পাঁচজন পলেষ্টীয় শাসককে ডাকল| তাদের ওরা জিজ্ঞেস করল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের এই পবিত্র সিন্দুক নিয়ে আমাদের কি করা উচিত্?”শাসকরা বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক গাতে নিয়ে যাও|” সেই মতো পলেষ্টীয়রা পবিত্র সিন্দুক সেখান থেকে সরিয়ে দিল| 9 কিন্তু তারা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক গাতে নিয়ে যাবার পর প্রভু সেখানকার শহরের লোকদের শাস্তি দিলেন| তারা বেশ ভয় পেয়ে গেল| তারা বিপদে পড়ল| বালক বৃদ্ধ সকলের গায়েই টিউমার বা অর্বুদ দেখা গেল| 10 তাই পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ইক্রোণে পাঠিয়ে দিল|কিন্তু সেটা ইক্রোণে এলে সেখানকার লোকরা ক্রন্দন কর, “কেন তোমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক আমাদের ইক্রোণে আনলে? তোমরা কি আমাদের ও আমাদের লোকদের মেরে ফেলতে চাও?” 11 ইক্রোণের লোকরা পলেষ্টীয় শাসকদের ডেকে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুক যেখানে ছিল সেখানেই পাঠিয়ে দাও| এই সিন্দুক আমাদের এবং আমাদের লোকদের মেরে ফেলার আগেই কাজটা করে ফেল|”সারা শহরের যেখানেই ঈশ্বরের হাতের আঘাত পড়েছিল সেখানে ভয়ঙ্কর শাস্তি হয়েছিল| 12 বহু লোক মারা গেল| আর যারা বেঁচে রইল তাদের গায়ে আব দেখা দিল| স্বর্গের দিকে তাকিযে তারা খুব কাঁদতে শুরু করল|
1 সাত মাস পলেষ্টীয়রা তাদের দেশে পবিত্র সিন্দুকটিকে রেখে দিয়েছিল| 2 তারা যাজক আর যাদুকরদের ডাকল| তাদের জিজ্ঞাসা করল, “প্রভুর এই সিন্দুক নিয়ে আমাদের কি করা উচিত্? কি করে আমরা সেটা যথাস্থানে ফিরিযে দিতে পারি?” 3 যাজক আর যাদুকররা বলল, “যদি তোমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ফিরিযে দাও তাহলে কখনও তা খালি পাঠাবে না| অবশ্যই তোমরা নৈবেদ্য সাজিযে দেবে| তাহলেই ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাদের পাপ মুক্ত করবেন| তোমরা সুস্থ হবে| যা বললাম তাই করো, তাহলে ঈশ্বর তোমাদের আর শাস্তি দেবেন না|” 4 পলেষ্টীয়রা জিজ্ঞেস করল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মার্জনা পেতে হলে কি ধরণের উপহার দিতে হবে?”যাজক আর যাদুকররা বলল, “পাঁচজন পলেষ্টীয় শাসক রযেছে| এরা প্রত্যেকে এক একটি শহরের নেতা| তোমাদের সমস্ত লোকের ও নেতাদের সমস্যা একই রকম| তাই এক কাজ করো, পাঁচটা সোনার ইঁদুর আর পাঁচটা টিউমার তৈরী করো| 5 টিউমারগুলির এবং ইঁদুরের সোনার মূর্ত্তি তৈরী কর যা তোমাদের দেশকে ধ্বংস করছে এবং তাদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করো| তাহলে হয়তো তিনি তোমাদের আর তোমাদের দেবতাদের আর সেই সঙ্গে তোমাদের দেশের ওপর সমস্ত শাস্তি রদ করতে পারেন| 6 ফরৌণ আর মিশরীয়দের মতো কখনও হৃদয় অনমনীয করো না| ঈশ্বর মিশরীয়দের শাস্তি দিয়েছিলেন, আর সেই জন্যই মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের মিশর ছেড়ে চলে যেতে দিয়েছিল| 7 “তোমরা অবশ্যই একটা নতুন টানাগাড়ি তৈরী করো আর সদ্য বিযোনো দুটো গাভী জোগাড় করো| গাভী দুটো যেন মাঠে কখনও কাজ না করে থাকে| ওদের গাড়ীর সঙ্গে জুড়ে দাও| তারপর বাছুরগুলোকে গোযালে পুরে দাও| কিছুতেই যেন তারা মাযেদের পিছু না নেয| 8 গাড়ীর মধ্যে এবার প্রভুর পবিত্র সিন্দুকটি রাখো| আর সিন্দুকের পাশে থলিতে সোনার ছাঁচগুলো রাখবে| সোনার ছাঁচগুলো ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের উপহার, যাতে তিনি তোমাদের ক্ষমা করেন| তারপর গাড়ীটা ছেড়ে দাও| 9 গাড়ীটার দিকে লক্ষ্য রাখবে| যদি সেটা ইস্রায়েলের বৈত্-শেমশের দিকে যায় তাহলেই বুঝবে প্রভু আমাদের এই ভযানক রোগ দিয়েছেন| আর যদি সোজাসুজি বৈত্-শেমশের দিকে না যায় তবে জানবে যে ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাদের শাস্তি দেন নি| তাহলে আমরা জানব আমাদের এমন রোগ এমনিই হয়েছে|” 10 পলেষ্টীয়রা যাজক ও যাদুকরদের কথামত কাজ করল| সদ্য বিযোনো গাভী তারা পেয়ে গেল| গাভী দুটো গাড়ীর সঙ্গে জুড়ে দিল আর বাছুরদের গোযালে ঢুকিয়ে দিল| 11 তারপর পলেষ্টীয়রা ভেতরে রেখে দিল প্রভুর পবিত্র সিন্দুক| সোনার টিউমার আর ইঁদুরের ছাঁচগুলোর থলিটাও রেখে দিল| 12 গাভীদুটো সোজা বৈত্-শেমশের দিকে গেল, সমস্ত রাস্তা তারা হাম্বা হাম্বা শব্দ করে চলল| ডাইনে কি বাঁযে একবারও ঘুরল না| পলেষ্টীয় শাসকরা বৈত্-শেমশের সীমানা পর্য়ন্ত গাভী দুটোর পেছনে পেছনে গেল| 13 বৈত্-শেমশের লোকরা উপত্যকার ক্ষেত্র থেকে গম তুলছিল| তারা পবিত্র সিন্দুকটা দেখে খুব খুশী হয়ে সিন্দুকটা পাবার জন্য ছুটে গেল| 14 মাঠটা ছিল বৈত্-শেমশের বাসিন্দা য়িহোশূযের| সেই মাঠের ওপর একটা বড় পাথরের কাছে এসে গাড়ীটা থামল| বৈত্-শেমশের লোকরা গরুর গাড়ী থেকে গাড়ীটা আলাদা করে গাভী দুটোকে মেরে ফেলল এবং সেগুলো তারা প্রভুর কাছে নিবেদন করল|লেবীয়রা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক আর সোনার ছাঁচের থলেটা নামিযে আনল| তারা প্রভুর সিন্দুক আর থলেটা পাথরের ওপর রাখল| সেদিন বৈত্-শেমশের লোকরা প্রভুকে হোমবলি নিবেদন করল| 15 16 পাঁচজন পলেষ্টীয় শাসক বৈত্-শেমশে এই সমস্ত ক্রিযাকাণ্ড দেখে সেদিনই ইক্রোণে ফিরে গেল| 17 এভাবেই পলেষ্টীয়রা প্রভুর কাছে যে পাপ করেছিল তা স্খালনের জন্য টিউমারের সোনার ছাঁচগুলো উপহার হিসেবে পাঠিয়ে দিয়েছিল| তারা প্রত্যেক পলেষ্টীয় শহরে একটি করে টিউমারের সোনার ছাঁচ পাঠিয়ে দিয়েছিল| পলেষ্টীয়দের এই শহরগুলি হচ্ছে: অস্দোদ, ঘসা, অস্কিলোন, গাত্ এবং ইক্রোণ| 18 পলেষ্টীয়রা সোনার ইঁদুরের ছাঁচ পাঠিয়েছিল| পলেষ্টীয় শাসকদের যতগুলো শহর ছিল, সোনার তৈরী ইঁদুরও ছিল ততগুলো| শহরগুলো ছিল পাঁচিলে ঘেরা| আবার প্রত্যেক শহর ছিল গ্রাম দিয়ে ঘেরা|বৈত্-শেমশের লোকরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক পাথর খণ্ডের ওপর রেখে দিল| বৈত্-শেমশের য়িহোশূযের মাঠে আজও সেই পাথর দেখা যাবে| 19 কিন্তু বৈত্-শেমশের লোকরা যখন প্রভুর পবিত্র সিন্দুক দেখতে পেল তখন সেখানে কোন যাজক ছিল না| তাই ঈশ্বর বৈত্-শেমশের 70 জন লোককে হত্যা করলেন| প্রভুর এই কঠোর শাস্তির জন্য বৈত্-শেমশের লোকরা খুব কাঁদল| 20 লোকরা বলল, “এই পবিত্র সিন্দুকটির দেখাশোনা করবার যাজক কোথায়? এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে আমরা এটাকে কোথায় পাঠাবো?” 21 কিরিযত্-য়িযারীমে একজন যাজক ছিল| বৈত্-শেমশের লোকরা সেখানে দূত পাঠাল| দূতরা বলল, “পলেষ্টীয়রা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক ফিরিযে দিয়েছে| এবার তোমরা নেমে এসো| সিন্দুকটি তোমাদের শহরে নিয়ে যাও|”
1 কিরিযত্-য়িযারীমের লোকরা এসে সেই প্রভুর পবিত্র সিন্দুকটি গ্রহণ করল| তারা সেটা পর্বতের ওপর অবীনাদবের বাড়িতে নিয়ে গেল| অবীনাদবের পুত্র ইলিয়াসকে তৈরী করবার জন্য তারা একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করল যাতে সে পবিত্র সিন্দুক পাহারা দিতে পারে| 2 কিরিযত্-য়িযারীমে সিন্দুকটি দীর্ঘ 20 বছর ধরে ছিল|ইস্রায়েলীয়রা আবার প্রভুকে অনুসরণ করতে শুরু করল| 3 শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দের বলল, “যদি তোমরা সত্যিই মনে প্রাণে প্রভুর কাছে ফিরে আসো তাহলে ভিন্দেশী অন্যান্য মূর্ত্তিকে অবশ্যই তোমাদের ফেলে দিতে হবে| অষ্টারোতের সমস্ত মূর্ত্তিকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে| প্রভুর সেবায অবশ্যই তোমাদের সম্পূর্ণভাবে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে| তোমাদের শুধু মাত্র প্রভুরই সেবা করতে হবে| তাহলেই তিনি তোমাদের পলেষ্টীয়দের হাত থেকে রক্ষা করবেন|” 4 একথা শুনে ইস্রায়েলীয়রা বাল এবং অষ্টারোতের মূর্ত্তি ফেলে দিয়ে কেবলমাত্র প্রভুরই সেবা করতে লাগল| 5 শমূয়েল বলল, “সমস্ত ইস্রায়েলীয়কে মিস্পায জমায়েত হতে হবে| আমি তোমাদের জন্য প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব|” 6 ইস্রায়েলীয়রা মিস্পায সমবেত হল| তারা জল তুলল এবং সেটা প্রভুর সামনে ঢেলে দিল| এই ভাবে তারা উপবাস কাল শুরু করল| সেই দিন তারা কোন খাদ্য গ্রহণ না করে সমস্ত পাপ স্বীকার করল| তারা বলল, “আমরা প্রভুর কাছে পাপ করেছি|” এই ভাবে মিস্পায ইস্রায়েলীয়দের বিচারক হিসেবে শমূয়েল কাজ করতে লাগল| 7 পলেষ্টীয়রা জানতে পারল ইস্রায়েলীয়দের মিস্পায সমবেত হবার খবর| ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয় শাসকরা যুদ্ধ করতে গেল| পলেষ্টীয়দের আসার সংবাদে ইস্রায়েলীয়রা ভয় পেয়ে গেল| 8 ইস্রায়েলীয়রা শমূয়েলকে বলল, “আমাদের জন্য, আমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো, থেমো না! তাঁকে বলো, হে প্রভু পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমাদের বাঁচান!” 9 শমূয়েল একটা মেষশাবক নিয়ে এল| প্রভুকে সে এই মেষটি একটি সম্পূর্ণ হোমবলি হিসাবে নিবেদন করল| ইস্রায়েলের জন্য শমূয়েল প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে লাগল| প্রভু সেই প্রার্থনায সাড়া দিলেন| 10 শমূয়েল যখন মেষটি পোড়াচ্ছিল, সেই সময় পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এল| আর তখন প্রভু পলেষ্টীয়দের দিকে প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত করলেন| এতে তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়ল| ভয় পেয়ে গেল| ওদের নেতারা ওদেরই সামলাতে পারল না| তাই যুদ্ধে ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিল| 11 মিস্পা থেকে বেরিয়ে ইস্রাযেলীযা পলেষ্টীয়দের তাড়া করল| বৈত্-কর পর্য়ন্ত সারাটা রাস্তা তাড়িয়ে নিয়ে গেল| আর সমস্ত পলেষ্টীয় সৈন্যদের ওরা পথে মেরে ফেলল| 12 এরপর শমূয়েল একটা বিশেষ ধরণের প্রস্তর স্থাপন করল| উদ্দেশ্য, লোকরা যাতে প্রভুর কর্মকাণ্ড ভুলে না যায়| পাথরটা রইল মিস্পা এবং সেন এর মাঝখানে| শমূয়েল পাথরটির নাম দিল “সাহায্যের পাথর|” সে বলল, “প্রভু সমস্ত রাস্তা ঘুরে আমাদের এখানে আসতে সাহায্য করেছেন!” 13 পলেষ্টীয়রা হেরে গেল| তারা আর ইস্রায়েলে ঢুকল না| শমূযেলের বাকি জীবনে প্রভু পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে ছিলেন| 14 পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের কিছু শহর দখল করেছিল| তারা ইক্রোণ থেকে গাত্ পর্য়ন্ত সমস্ত শহর নিয়ে নিয়েছিল| সে সব ইস্রায়েলীয়রা আবার ফিরে পেল| এই শহরগুলোর চারপাশের ভূখণ্ডগুলিও তারা জিতে নিল| ইস্রাযেল এবং ইমোরীয়দের মধ্যে শান্তি স্থাপিত হল| 15 শমূয়েল সারাজীবন ধরে ইস্রাযেলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল| 16 নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে সে ইস্রায়েলীয়দের বিচার করত| প্রত্যেক বছর সে সারা দেশ ঘুরত| বৈথেল, গিল্গাল, আর মিস্পা এই সব জায়গায় গিয়ে ইস্রায়েলের লোকের শাসন ও বিচার করত| 17 শমূযেলের বাড়ী ছিল রামাতে| তাই প্রত্যেকবার তাকে রামায় ফিরে যেতে হত| ঐ শহর থেকেই সে ইস্রাযেল শাসন করত, বিচারের কাজকর্ম চালাত| রামায় শমূয়েল প্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করেছিল|
1 শমূয়েল বৃদ্ধ হলে সে তার পুত্রদের ইস্রায়েলের বিচারক করল| 2 শমূযেলের প্রথম পুত্রের নাম য়োয়েল| দ্বিতীয় পুত্রের নাম অবিয়| য়োয়েল ও অবিয় ছিল বের্-শেবার বিচারক| 3 পুত্ররা শমূযেলের মতো জীবনযাপন করত না| য়োয়েল ও অবিয় ঘুষ নিত, গোপনে টাকা নিয়ে বিচার সভায রায বদলে দিল| এমন কি বিচারালযে লোক ঠকাত| 4 এই কারণে ইস্রায়েলের প্রবীণরা সবাই মিলে শমূযেলের সঙ্গে দেখআ করতে রামায় গেল| 5 তারা শমূয়েলকে বলল, “আপনি বৃদ্ধ হয়েছেন, আর আপনার পুত্ররা ঠিকভাবে জীবন কাটাচ্ছে না| তারা আপনার মতো নয়| তাই বলছি, আপনি আমাদের একটা রাজার ব্যবস্থা করুন, অন্যান্য সব দেশে যেমন থাকে|” 6 এই ভাবে প্রবীণরা তাদের নেতৃত্ব দিতে পারে এমন একজন রাজা চাইল| কিন্তু শমূযেলের মনে হল এটা একটা খারাপ চিন্তা| তাই তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন| 7 প্রভু বললেন, “লোকরা যা বলছে তাই করো| তারা তোমাকে প্রত্যাখ্যান করে নি| তারা আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, কারণ তারা রাজা হিসেবে আমাকে চায না| 8 অতীতের মত বার বার সেই একই কাজ তারা করছে| আমি ওদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলাম; কিন্তু সেই ওরা আমাকেই ছেড়ে দিয়ে অন্য সব দেবতার পূজো করেছিল| তোমার ক্ষেত্রেও এরা সেই এক কাজ করছে| 9 ঠিক আছে, ওদের কথা মতোই চলো; কিন্তু তাদের একবার সাবধান করো, ওদের বলে দিও একজন রাজা তাদের প্রতি কি ব্যবহার করবে এবং কিভাবে একজন রাজা তাদের শাসন করবে|” 10 লোকরা একজন রাজা চাইছিল| তখন শমূয়েল তাদের কাছে প্রভুর কথিত সমস্ত কথাই শোনাল| 11 শমূয়েল বলল, “যদি তোমরা রাজা চাও তাহলে সে কি কি করবে শোন| সে তোমাদের পুত্রদের তোমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবে এবং জোর করে তাদের দিয়ে নিজের সেবা করিযে নেবে| তাদের জোর করে সৈন্য করবে, রথ আর অশ্ববাহিনীতে ঢুকিয়ে তাদের দিয়ে লড়াই করাবে| রাজার রথকে সামলানোর জন্য সেই রথের সামনে ছুটে ছুটে তারা পাহারা দেবে| 12 রাজা তোমাদের পুত্রদের জোর করে সৈন্যবাহিনীতে ঢোকাবে| তাদের মধ্যে কেউ কেউ 1,000 জনের ওপর অধিকর্তা হবে| আবার কেউ কেউ 50 জনের ওপর অধিকর্তা হবে| তাছাড়া সে তোমাদের পুত্রদের দিয়ে জোর করে চাষ করাবে, ফসল তোলাবে| সে জোর করে যুদ্ধের জন্য অস্ত্র ও রথের জন্য জিনিসপত্র তৈরী করাবে| 13 “একজন রাজা তোমাদের কন্যাদের ধরবে এবং তাদের নিয়ে যাবে| তাদের দিয়ে রাজা নিজের জন্য সুগন্ধি দ্রব্য তৈরী করাবে| এছাড়া তাদের দ্বারা রান্নাবান্না, রুটি বানানো এইসব কাজও করিযে নেবে| 14 “রাজা তোমাদের ভাল ভাল জমি, দ্রাক্ষা আর জলপাইযের বাগান কেড়ে নিয়ে তা তার কর্মচারীদের বিলিযে দেবে| 15 তোমাদের শস্য আর দ্রাক্ষার দশভাগের একভাগ নিয়ে তার কর্মচারী আর ভৃত্যদের দিয়ে দেবে| 16 একজন রাজা তোমাদের দাস ও দাসীদের নিয়ে নেবে| সে তোমাদের সব চেয়ে সেরা গবাদি পশু ও গাধাদের নেবে| সে তার নিজের উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহার করবে| 17 তোমাদের পালের পশুদের দশ ভাগের একভাগ রাজা নিয়ে নেবে|“আর তোমরা সবাই হবে রাজার ক্রীতদাস| 18 এমন একটা সময় আসবে যখন তোমরা তোমাদের মনোনীত করা রাজার জন্য কাঁদবে| কিন্তু সেই সময় প্রভু তোমাদের ডাকে সাড়া দেবেন না|” 19 কিন্তু শমূযেলের কথা লোকরা শুনল না| তারা বলল, “না, আমরা আমাদের শাসক হিসেবে একজন রাজাই চাইছি| 20 রাজা থাকলে আমরা সবাই অন্যান্য দেশের লোকদের মতো থাকতে পারব| আমাদের রাজাই আমাদের চালাবেন| যুদ্ধের সময় তিনি আমাদের আগে যাবেন এবং আমাদের যুদ্ধে লড়াই করবেন|” 21 এই শুনে শমূয়েল প্রভুর কাছে লোকের কথাগুলো সব শোনালেন| 22 প্রভু বললেন, “ওদের কথা শোন! ওদের জন্য একজন রাজার ব্যবস্থা করে দাও|”তখন শমূয়েল ইস্রাযেলবাসীদের বলল, “বেশ তাই হবে| তোমরা একজন নতুন রাজা পাবে| এখন তোমরা সবাই বাড়ি যাও|”
1 কীশ ছিলেন বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি| কীশের পিতার নাম অবীযেল| অবীযেলের পিতা সরোর| সরোরের পিতা বখোরত, বখোরতের পিতা অফীহ, তিনি বিন্যামীনের লোক| 2 কীশের একজন পুত্র ছিল, তার নাম শৌল| সুদর্শন যুবক শৌলের মতো এত সুন্দর আর কেউ ছিল না| ইস্রায়েলের সকলের চেয়ে সে ছিল মাথায় লম্বা| 3 একদিন কীশের গাধা হারিয়ে গেলে তিনি তাঁর পুত্র শৌলকে বললেন, “একজন ভৃত্যকে নিয়ে গাধাগুলো খুঁজে আনো|” 4 শৌল গাধাগুলো খুঁজতে বেরিয়ে গেল| সে ইফ্রয়িম পাহাড়ের মধ্যে এবং শালিশার আশেপাশের জায়গার মধ্যে দিয়ে গেল| কিন্তু শৌল আর তার ভৃত্য গাধাগুলো খুঁজে পেল না| এবার তারা শালীমের দিকে হাঁটা শুরু করল, সেদিকেও গাধাগুলোর খোঁজ পেল না| অগত্যা শৌল বিন্যামীনদের দেশের দিকে রওনা হল| এমনকি সেখানেও তারা গাধাগুলো খুঁজে পেল না| 5 অবশেষে শৌল ও তার ভৃত্য সূফ শহরে এল| শৌল ভৃত্যটিকে বলল, “চল আমরা বাড়ী ফিরি| আমার পিতা গাধাগুলোর জন্য চিন্তা থামিয়ে তার পরিবর্তে আমাদের নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু করবেন|” 6 ভৃত্যটি বলল, “এই শহরেই ঈশ্বরের একজন ভাববাদী রযেছেন যাকে লোকরা খুবই ভক্তি করে| তিনি যা বলেন তাই সত্য হয়| চলুন আমরা শহরের ভেতরে যাই| তিনি হয়তো আমাদের বলে দিতে পারেন, এরপর আমাদের কোথায় যেতে হবে|” 7 শৌল তাকে বলল, “বেশ, আমরা নয় শহরের ভেতরে ঢুকলাম; কিন্তু তাকে আমরা কি দিতে পারি? তাকে দেবার মত কোন উপহার তো আমাদের হাতে নেই| এমন কি আমাদের ঝুলিতে খাদ্যদ্রব্যও শেষ| কি দেব তাকে?” 8 ভৃত্যটি শৌলকে বলল, “শোন, আমার কাছে য়ত্সামান্য কিছু অর্থ আছে, সেটা আমি ঈশ্বরের লোককে দেব| তিনিই আমাদের রাস্তা বলে দেবেন|” 9 শৌল বলল, “ভাল কথা, তাহলে চলো|” তাই তারা সেই শহরে গেল, যেখানে ঈশ্বরের ভাববাদী থাকত|শৌল ও তার ভৃত্যটি পর্বতের পথ দিয়ে শহরের দিকে যাচ্ছিল| সেই সময় য়ুবতীরা জল নেওয়ার জন্য বের হয়ে আসছে দেখে তারা জিজ্ঞাসা করল, “দর্শনকারী কি এই জায়গায় রযেছেন?” (অতীতে ইস্রায়েলের লোকরা ভাববাদীকে “দর্শনকারী” বলেও ডাকত| তাই ঈশ্বরের কাছে কিছু বিষযে প্রশ্ন করতে চাইলে তারা বলত, “চলো দর্শনকারীর কাছে যাই|”) 10 11 12 য়ুবতীরা উত্তর দিলো, “হ্যাঁ, দর্শনকারী এখানেই আছেন| তিনি ওখানে আছেন, তোমাদের আগে| তিনি আজ এই শহরে এসেছেন| কিছু লোক মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য আজ উপাসনা স্থানে সমবেত হচ্ছে| 13 তাই শহরে গেলে তোমরা তাঁর দেখা পাবে| যদি তোমরা দ্রুত পথ চল তবে তিনি উপাসনার স্থানে খেতে বসার আগেই তোমরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে পারবে| দর্শনকারী নৈবেদ্য বলি আশীর্বাদ করেন| তাই তিনি সেখানে না পৌঁছানো পর্য়ন্ত লোকে খেতে বসবে না| তাড়াতাড়ি পথ চললে তোমরা দর্শনকারীর দেখা পাবে|” 14 শৌল ও তার ভৃত্য শহরে যাবার জন্যে পাহাড়ে উঠলে, শহরে ঢোকার সময়ই তারা দেখল শমূয়েল তাদের দিকেই আসছে| শমূয়েল তখন সবে উপাসনার স্থানে যাবার জন্যে বের হয়েছে| 15 এর আগের দিন প্রভু শমূয়েলকে বলেছিলেন, 16 “আগামীকাল ঠিক এই সমযেই আমি তোমার কাছে একজনকে পাঠাবো| সে বিন্যামীন পরিবারের লোক| তুমি তার অভিষেক করে তাকে ইস্রায়েলের নতুন নেতা করবে| এই লোকটিই পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমার লোকদের রক্ষা করবে| আমি তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখেছি, আমি তাদের কান্না শুনেছি|” 17 শমূয়েল শৌলকে দেখতে পেল এবং প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “আমি এই লোকটার কথাই তোমাকে বলেছিলাম| সে আমার লোকদের ওপর শাসন করবে|” 18 ফটকের কাছে শৌল একজন লোকের কাছে পথ নির্দেশ জিজ্ঞেস করতে গেল| ঘটনাচক্রে এই লোকটি ছিল শমূয়েল| শৌল তাকে জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় সেই দর্শনকারীর বাড়ি আমায় দয়া করে বলে দিন|” 19 শমূয়েল বলল, “আমিই সেই দর্শক| আমার আগে আগে উপাসনার স্থানের দিকে এগিয়ে যাও| তুমি তোমার ভৃত্যকে নিয়ে আজ আমার সঙ্গে খাবে| কাল সকালে তোমার বাড়ি যেও| আমি তোমার সব প্রশ্নেরই উত্তর দেব| 20 তিন দিন আগে যে গাধাগুলো তুমি হারিয়েছ, তাদের নিয়ে আর মন খারাপ করো না; তাদের পাওয়া গেছে| এখন ইস্রায়েলের প্রত্যেকে একজনকে খুঁজছে| তুমিই সেই ব্যক্তি| তারা তোমাকে এবং তোমার পিতার পরিবারের সকলকে চায|” 21 শৌল বলল, “কিন্তু আমি তো বিন্যামীন পরিবারের একজন| ইস্রায়েলের এটাই সবচেয়ে ছোট পরিবারগোষ্ঠী এবং এই পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে ছোট হচ্ছে আমার পরিবার| তবে আপনি কেন বলছেন ইস্রায়েলের আমাকে প্রযোজন?” 22 তারপর শমূয়েল, শৌল ও তার ভৃত্যকে নিয়ে খাবার জায়গায় গেল| বলির নৈবেদ্য ভাগ করে খাবার জন্যে প্রায 30 জন লোককে পংক্তি ভোজনে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল| শৌল ও তার ভৃত্যটিকে শমূয়েল টেবিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসালো| 23 শমূয়েল পাচককে বলল, “সরিয়ে রাখার জন্য যে মাংস আমি তোমাকে দিয়েছিলাম সেটা এবার আমায় দাও|” 24 পাচক ঊরু দেশের মাংসটা শৌলের টৈবিলের সামনে রেখে দিলে শমূয়েল শৌলকে বলল, “তোমার সামনে রাখা মাংসটা খাও| আমি এটা তোমার জন্য রেখেছি| এই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য আমি এটা রেখেছিলাম|” তাই সেদিন শৌল শমূযেলের সঙ্গে খাওয়া দাওযা করল| 25 খাওয়ার পর তারা উপাসনার স্থান থেকে নেমে এসে শহরে ফিরে গেল| শমূয়েল শৌলের জন্য ছাদে বিছানা পেতেছিল| শৌল ঘুমোতে গেল| 26 পরদিন ভোরে শমূয়েল চেঁচিয়ে শৌলকে ডাকলেন| সে বলল, “উঠে পড়ো| আমি তোমায় রাস্তায় পৌঁছে দেব|” শৌল উঠে শমূযেলের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল| 27 শমূয়েল, শৌল ও তার ভৃত্য সবাই মিলে শহরের সীমানা পর্য়ন্ত গেল| তখন শমূয়েল শৌলকে বলল, “তোমার ভৃত্যকে এগিয়ে যেতে বলো| তোমাকে একটা বাণী দেব| ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বাণী এসেছে|” তাই ভৃত্যটি এগিয়ে গেল|
1 শমূয়েল তার তেলের বোতল শৌলের মাথায় ঢেলে দিল| তারপর সে শৌলকে চুমু খেয়ে বলল, “প্রভু তোমাকেই তাঁর লোকদের নেতা হিসাবে মনোনীত করেছেন| তুমিই প্রভুর লোকদের নিয়ন্ত্রণ করবে| চতুর্দিকে যে সব শত্রু আছে তাদের হাত থেকে তুমি তাদের বাঁচাবে| এই চিহ্ন থেকে বুঝবে কথাটা সত্য| 2 আমার কাছ থেকে চলে যাবার পর তুমি রাচেলের সমাধির কাছে বিন্যামীন সীমানার সেল্সহতে দুটি লোকের সাক্ষাত্ পাবে| ঐ লোক দুটো তোমাকে বলবে, “যে গাধাগুলো তোমরা খুঁজছ তা কোন একজন দেখতে পেয়েছে| তোমার পিতা আর গাধাগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না, বরং তোমাকে নিয়েই তাঁর যত ভাবনা| শুধু বলছেন, আমার পুত্রের ব্যাপারে আমি কি করব|”‘ 3 শমূয়েল বলল, “তারপর যেতে যেতে তাবোরের কাছে একটা বড় ওক গাছ দেখতে পাবে| সেখানে তিনজন লোক তোমার সঙ্গে দেখা করবে| ঐ তিনজন বৈথেলে ঈশ্বরের উপাসনার জন্য যাচ্ছে| তুমি তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে তিনটে বাচ্চা ছাগল দেখতে পাবে| দ্বিতীয় জনের কাছে থাকবে তিন টুকরো রুটি| তৃতীয় জনের কাছে থাকবে এক বোতল দ্রাক্ষারস| 4 এই তিনজন লোক তোমায় অভিবাদন করবে| তারা তোমায় দু-টুকরো রুটি দেবে| তুমি তাদের কাছ থেকে সেটা নেবে| 5 তারপর তুমি যাবে গিবিয়াথ এলোহিম| সেখানে একটা পলেষ্টীয় দুর্গ আছে| এই শহরে তুমি যখন আসবে তখন একদল ভাববাদী বের হয়ে আসবে| তারা আসবে উপাসনার স্থান থেকে| তারা ভাববাণীকরতে থাকবে| তারা বীণা, তম্বুরা, বাঁশি ও অন্যান্য তন্ত্রবাদ্য বাজাবে| 6 তারপর প্রভুর আত্মা তোমার ওপর সবলে ভর করবেন| তুমি বদলে যাবে| তুমি একজন আলাদা ব্যক্তির মত হবে| তুমি অন্য ভাববাদীদের সঙ্গে ভাববাণী করতে শুরু করবে| 7 যখন এইসব চিহ্নগুলি পরিপূর্ণ হবে, তখন তুমি যা চাইবে তাই করতে পারবে| কারণ তখন ঈশ্বর তোমার সঙ্গেই বিরাজ করবেন| 8 “এবার আমার আগে গিল্গলে যাও| আমি তোমাকে যেতে দেখব| তারপর আমি সেখানে তোমার সঙ্গে দেখা করব| তারপর হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করব; কিন্তু সাতদিন তোমায় অপেক্ষা করতে হবে| তারপর আমি এসে তোমায কি করতে হবে বলে দেব|” 9 শমূযেলের কাছ থেকে বিদায নিয়ে যে মূহুর্তে শৌল ঘাড় ফেরালেন, ঈশ্বর শৌলের হৃদয়ের সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটালেন| সেই দিন ঐসব চিহ্নগুলি পরিপূর্ণ হয়েছিল| 10 শৌল আর তার ভৃত্য গিবিয়াথ এলোহিমে চলে গেল| সেখানে একদল ভাববাদীর সঙ্গে শৌলের দেখা হল| সেই সময় শৌলের ওপর সবলে ঈশ্বরের আত্মা নেমে এল| অন্য ভাববাদীদের সঙ্গে তিনিও ভাববাণী করলেন| 11 যারা শৌলকে আগেই জানত, তারা এখন শৌলকে অন্য ভাববাদীদের সঙ্গে ভাববাণী করতে দেখল| তারা বলাবলি করল, “কীশের পুত্রর এ কি হল? শৌলও কি একজন ভাববাদী হয়ে গেল?” 12 একটি লোক যে গিবিয়াথ এলোহিমে থাকত, সে বলল, “ওদের পিতা কে?” সেই থেকে এই কথাটা একটা প্রসিদ্ধ প্রবাদে পরিণত হয়েছে: “শৌলও কি ভাববাদীদের মধ্যে একজন?” 13 ভাববাণী করবার পর, সে তার বাড়ির কাছে উপাসনার জায়গায় পৌঁছল| 14 শৌলের কাকা শৌলকে ও তার ভৃত্যকে জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কোথায় ছিলে?”শৌল বলল, “আমরা গাধা খুঁজতে গিয়েছিলাম, কিন্তু গাধা খুঁজে না পেয়ে আমরা শমূযেলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম|” 15 শৌলের কাকা বলল, “শমূয়েল তোমায় কি বলল দয়া করে বল|” 16 শৌল বলল, “শমূয়েল বলছে গাধাগুলো পাওয়া গেছে|” শৌল তার কাকাকে সবটা বলল না| রাজত্ব সম্বন্ধে শমূয়েল তাকে যা বলেছিল সে বিষযে শৌল কিছুই বলল না| 17 শমূয়েল ইস্রাযেলবাসীদের মিস্পায প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবার জন্যে বলল| 18 সে বলল, “ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর, আমাদের প্রভু বলেন, ‘আমি ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বের করে এনেছি| আমি তোমাদের মিশরের ক্ষমতা থেকে এবং যে সমস্ত রাজ্যগুলি তোমাদের নিষ্পেষিত করে দুর্দশাগ্রস্ত করেছিল, তাদের থেকে বাঁচিয়েছি|’ 19 কিন্তু আজ তোমরা সেই ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছ| ঈশ্বরই তোমাদের সব বিপদ ও বিপত্তি থেকে উদ্ধার করেছেন, কিন্তু তোমরা বলছ, ‘আমাদের শাসন করবার জন্য আমরা একজন রাজা চাই|’ বেশ তবে তাই হোক্| এখন তোমাদের পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে প্রভুর সামনে দাঁড়াও|” 20 শমূয়েল ইস্রাযেলবাসীদের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে তার কাছে ডাকল| তারপর সে নতুন রাজা মনোনয়ন করতে শুরু করল| প্রথমে বাছা হল বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীকে| 21 সেই পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক পরিবারকে শমূয়েল তার সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে বলল| শমূয়েল এবার পছন্দ করল মট্রীযদের পরিবার| তারপর মট্রীযদের পরিবারের প্রত্যেককে শমূয়েল হেঁটে যেতে বলল| কীশের পুত্র শৌলকে সে এবার মনোনীত করল|কিন্তু লোকরা যখন শৌলকে খুঁজল, তারা তাকে পেল না| 22 তখন তারা প্রভুকে জিজ্ঞাসা করল, “শৌল কি এখানে এসেছে?”প্রভু বললেন, “শৌল জিনিসপত্রের পেছনেই লুকিয়ে রযেছে|” 23 লোকরা ছুটে গিয়ে সেখান থেকে শৌলকে বের করে আনলে শৌল সকলের মাঝখানে দাঁড়াল| সকলের মধ্যে শৌলই ছিল লম্বায এক মাথা উঁচু| 24 শমূয়েল সকলকে বলল, “এর দিকে তাকিযে দেখ| প্রভু একেই মনোনীত করেছেন| শৌলের মতো এখানে তোমাদের মধ্যে আর কেউ নেই|”লোকরা বলে উঠল, “রাজা দীর্ঘাযু হোন্|” 25 শমূয়েল তাদের সমস্ত রাজকীয নিয়ম ও বিধিগুলি বুঝিযে দিল| সে সেগুলো একটা বইয়ে লিখে রাখল| পরে প্রভুর সানে সেই বইখানি রেখে শমূয়েল সবাইকে বাড়ি চলে যেতে বলল| 26 শৌলও গিবিয়ায় তার বাড়ি চলে গেল| ঈশ্বর সাহসীদের হৃদয় স্পর্শ করল| এই সাহসীরা শৌলকে অনুসরণ করল| 27 কিন্তু কিছু অশান্তি সৃষ্টিকারী লোক বলল, “এই লোকটা কি করে আমাদের রক্ষা করবে?” শৌলকে নিয়ে তারা নিন্দামন্দ করতে লাগল| তারা শৌলকে কোন উপহার দিন না| কিন্তু শৌল এ নিয়ে কিছু বলল না|অম্মোনদের রাজা নাহশ গাদ আর রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর ওপর নির্য়াতন চালাত| এদের প্রত্যেকেরই ডান চোখ সে উপড়ে নিয়েছিল, কেউ তাদের সাহায্য করুক নাহশ তা চাইত না| যর্দন নদীর পূর্বদিকে যেসব ইস্রায়েলীয় বসবাস করত, তাদের ডান চোখ সে উপড়ে নিয়েছিল| কিন্তু 7,000 ইস্রায়েলীয় অম্মোনদের হাত থেকে পালিয়ে গিয়ে যাবেশ গিলিয়দে চলে গিয়েছিল|
1 প্রায একমাস পর অম্মোনদের রাজা নাহশ তার সৈন্যসামন্ত নিয়ে যাবেশ গিলিয়দ ঘিরে ফেলল| যাবেশের লোকেরা নাহশকে বলল, “যদি আমাদের সঙ্গে তুমি একটি শান্তি চুক্তি কর তাহলে আমরা তোমার সেবা করব|” 2 নাহশ বলল, “তোমাদের প্রত্যেকের ডান চোখ যদি উপড়ে নিয়ে নিতে পারি তাহলেই তোমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে পারি| তবেই সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা লজ্জা পাবে!” 3 যাবেশের নেতারা বলল, “সাতদিন সময় দাও| সমস্ত ইস্রায়েলে আমরা দূত পাঠাব| যদি কেউ সাহায্য করতে না আসে তাহলে আমরা তোমার কাছে এসে আত্মসমর্পণ করব|” 4 বার্তাবাহকরা গিবিয়ায় এল; সেখানেই শৌল থাকত| তারা লোকদের খবরটি জানালে লোকরা কেঁদে উঠল| 5 শৌল তখন মাঠে গরু চরাতে গিয়েছিল| মাঠ থেকে ফিরে সে তাদের কান্না শুনতে পেল| সে জিজ্ঞেস করল, “তোমাদের কি হয়েছে? তোমরা কাঁদছ কেন?”তারা শৌলকে যাবেশের বার্তাবাহকরা কি বলেছিল তা বলল| 6 শৌল সব শুনল| তারপর ঈশ্বরের আত্মা সবলে তার ওপর এল| সে খুব রেগে গেল| 7 এক জোড়া বলদ নিয়ে সে তাদের কেটে টুকরো টুকরো করল| তারপর সে বার্তাবাহকদের হাতে সেই বলদের টুকরোগুলো দিয়ে তাদের সেই টুকরোগুলি নিয়ে সমস্ত ইস্রায়েলে ঘুরতে বলল| ইস্রাযেলবাসীদের কাছে বার্তাবাহকরা কি বলবে তাও সে বলে দিল| এই ছিল তার বাণী: “তোমরা সকলে শৌল এবং শমূয়েলকে অনুসরণ কর| যদি কেউ তাদের সাহায্য না করে তবে তাদের বলদের অবস্থা হবে এই টুকরোর মতো!”লোকদের মনে প্রভুর প্রতি মহা ভয় এলো এবং তারা সবাই মিলে একটি মানুষের একতা নিয়ে বের হয়ে এল| 8 শৌল বেষকে সকলকে একত্র করল| ইস্রাযেল থেকে এসেছিল 3,00,000 লোক, যিহূদা থেকে 30,000 জন| 9 শৌল এবং তার সৈন্যরা যাবেশের বার্তাবাহকদের বলল, “গিলিয়দে যাবেশের যত লোক আছে তাদের গিয়ে বল, কাল দুপুরের মধ্যেই তোমাদের রক্ষা করা হবে|”শৌলের বাণী বার্তাবাহকরা যাবেশের লোকদের শোনাল| শুনে তারা খুব খুশী হল| 10 তারপর তারা অম্মোনের রাজা নাহশকে বলল, “আমরা কাল তোমার কাছে আসব| তখন তুমি আমাদের নিয়ে যা চাও তাই করবে|” 11 পরদিন সকালে শৌল তাঁর সৈন্যদের তিনটে দলে ভাগ করলেন| সূর্য় উঠলে শৌল সসৈন্যে অম্মোনদের শিবির আক্রমণ করল| সেই সময় ওদের প্রহরীরা পালাবদল করছিল| দুপুরের আগেই শৌল অম্মোনদের পরাজিত করল| অম্মোন সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যে যেদিকে পারল পালিয়ে গেল| সবাই একা হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল| 12 তারপর লোকরা শমূয়েলকে বলল, “কোথায় গেল সেইসব লোক যারা বলেছিল শৌলকে রাজা হিসেবে আমরা চাই না? তাদের ডেকে নিয়ে এসো, আমরা তাদের হত্যা করব!” 13 কিন্তু শৌল বলল, “না আজ কাউকে হত্যা কোরো না| প্রভু আজ ইস্রাযেলকে রক্ষা করেছেন!” 14 তারপর শমূয়েল লোকদের বলল, “চলো, আমরা গিল্গলে যাই| গিল্গলে গিয়ে আমরা আবার শৌলকে রাজা করব|” 15 সকলে গিল্গলে গেল| সেখানে প্রভুর সামনে তারা শৌলকে রাজা হিসেবে ঘোষণা করল| তারা প্রভুকে মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করল| শৌল ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোক মহা আনন্দের সঙ্গে অনুষ্ঠান করল|
1 শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দের বলল, “তোমরা যা চেয়েছিলে আমি তার সবই করেছি| আমি তোমাদের জন্য একজন রাজা এনে দিয়েছি| 2 তোমাদের নেতৃত্ব দেবার জন্য এখন তোমরা একজন রাজা পেয়ে গেছ| আমি বৃদ্ধ হয়েছি; কিন্তু আমার পুত্ররা তোমাদের সঙ্গে থাকবে| আমি সেই ছোটবেলা থেকে তোমাদের নেতা হয়ে আছি| 3 আমাকে তো তোমরা জানো| যদি আমি কোন অন্যায় করে থাকি তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা সে কথা প্রভুর সামনে এবং মনোনীত রাজার সামনে বলবে| আমি কা কারো গাধা বা গরু চুরি করেছি? আমি কি কাউকে আঘাত করেছি বা ঠকিযেছি? আমি কি কারো দোষ ত্রুটি অবজ্ঞা করবার জন্য ঘুষ নিয়েছি? যদি তা করে থাকি তবে আমি নিশ্চয়ই সেই অন্যাযের প্রাযশ্চিত্ত করব|” 4 ইস্রাযেলবাসীরা বলল, “না আপনি কখনোই কোন অন্যায় করেন নি| আপনি কখনই আমাদের ঠকান নি বা কোন কিছু নিয়ে যান নি!” 5 শমূয়েল বলল, “আজ প্রভু আর তাঁর মনোনীত রাজা সাক্ষী| তোমরা যা বললে তাঁরা সবই শুনেছেন| তাঁরা জানলেন তোমরা আমার কোন দোষ পাও নি|” সকলে বলল, “হ্যাঁ, প্রভুই সাক্ষী!” 6 শমূয়েল বলল, “যা যা হয়েছে প্রভু সবই দেখেছেন| তিনিই মোশি এবং হারোণকে মনোনীত করেছিলেন| তিনিই তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে এনেছিলেন| 7 এবার এখানে দাঁড়াও এবং ঈশ্বর তোমাদের জন্যে ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য কি কি ভালো জিনিস করেছিলেন সে সম্বন্ধে শোন| 8 যাকোব মিশরে গিয়েছিল| পরবর্তীকালে মিশরীয়রা তার উত্তরপুরুষদের জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়েছিল| তাই তারা প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছিল| তখন প্রভু মোশি আর হারোণকে পাঠিয়েছিলেন| তারা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছিল এবং এই জায়গায় বাস করবার জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিল| 9 “কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের প্রভু ঈশ্বরের কথা ভুলে গেল| ফলে ঈশ্বর তাদের সীষরার ক্রীতদাস করে দিলেন| সীষরা ছিল হাত্সোরের সৈন্যদের অধিনাযক| তারপর প্রভু তাদের পলেষ্টীয় আর মোয়াবের রাজার ক্রীতদাস করে দিলেন| তারা সবাই তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল| 10 তখন পূর্বপুরুষরা প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছিল| তারা বলেছিল, ‘আমরা পাপ করেছি| আমরা প্রভুকে ত্যাগ করে বাল এবং অষ্টারোতের মূর্ত্তির পূজা করেছি; কিন্তু আজ শত্রুদের হাত থেকে আমাদের বাঁচাও| আমরা তোমারই সেবা করব|’ 11 “তখন প্রভু য়িরুব্বাল (গিদিযন), বরাক, য়িপ্তহ এবং শমূয়েলকে পাঠালেন| প্রভু, তোমাদের চারপাশের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করলেন| তোমরা নিরাপদে বাস করছিলে| 12 কিন্তু তারপর তোমরা দেখলে অম্মোনদের রাজা নাহশ তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছে| অমনি বলে উঠলে, ‘না, আমরা একজন রাজা চাই যে আমাদের শাসন করবে!’ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর ইতিমধ্যেই তোমাদের রাজা থাকা সত্ত্বেও তোমরা সেটা বলেছিলে| 13 এখন তোমরা তোমাদের ইচ্ছে ও পছন্দ অনুযায়ীএকজন রাজা পেয়েছ| প্রভু তাকেই তোমাদের শাসন করার ভার দিয়েছেন| 14 তোমাদের প্রভুকে ভয় ও সম্মান করে চলা উচিত্| তোমরা অবশ্যই তাঁর সেবা করবে ও তাঁর আজ্ঞা মেনে চলবে| তোমরা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করবে না| তোমরা সবাই আর তোমাদের রাজা অবশ্যই তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বরের অনুগত থাকবে| তাহলেই তিনি তোমাদের রক্ষ করবেন| 15 কিন্তু তাঁর আদেশ অমান্য করলে অথবা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করলে তিনি তোমাদের বিরুদ্ধে যাবেন, যেমন তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন| 16 “এখন স্থির হয়ে দাঁড়াও এবং প্রভু তোমাদের চোখের সামনে যে সব মহান জিনিসগুলি করবেন তা দেখো| 17 এখন গম তোলবার সময়| প্রভুর কাছে আমি প্রার্থনা করব বজ্র আর বৃষ্টির জন্য| তখনই বুঝতে পারবে রাজা চাইতে গিয়ে প্রভুর বিরুদ্ধে তোমরা কি অন্যায় করেছ|” 18 শমূয়েল তাই প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল| ঠিক সেদিনই প্রভু বজ্র আর বৃষ্টি দিলেন| লোকরা প্রভু আর শমূয়েলকে ভয় পেল| 19 তারা সবাই শমূয়েলকে বলল, “তোমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে তুমি আমাদের জন্য প্রার্থনা করো| আমরা তোমার ভৃত্য| আমরা যেন মারা না পড়ি| আমরা অনেকবার পাপ করেছি| এবার আবার আমরা রাজা চেয়ে পাপের বোঝা বাড়ালাম|” 20 শমূয়েল উত্তরে বলল, “ভয় পেও না| এটা সত্যি, তোমরা এসব অন্যায় করেছিলে| কিন্তু প্রভুর অনুসরণ করে চলো, থেমো না| মনপ্রাণ দিয়ে তোমরা তাঁর সেবা করবে| 21 মূর্ত্তি কখনও তোমাদের সাহায্য করতে পারে না| মূর্ত্তি মূর্ত্তিই, তাই ওগুলোর পূজো করো না| ওগুলো কোন কাজেরই নয়| মূর্ত্তিরা তোমাদের সাহায্য বা রক্ষা করতে পারে না| 22 “কিন্তু প্রভু কখনও তাঁর লোকদের ছেড়ে যান না| তোমাদের তাঁর আপনজন করে নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট আছেন| তাই তাঁর মহানামের গুনে কখনই তিনি তোমাদের ছেড়ে যাবেন না| 23 আমার দিক থেকে বলতে পারি, আমি সবসময় তোমাদের হয়ে প্রার্থনা করব| প্রার্থনা বন্ধ করলে আমি প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করব| আমি তোমাদের সত্য পথের বিষযে শিক্ষা দিয়ে যাব যেন তোমরা সত্ভাবে জীবনযাপন করতে পার| 24 তবে তোমরা অবশ্যই প্রভুকে সম্মান করবে| তোমাদের জন্যে তিনি যে সব মহত্ কর্ম করেছেন সেগুলো মনে রাখবে| 25 কিন্তু তোমরা যদি মন্দ কাজ করতে থাকো তাহলে ঈশ্বর তোমাদের আর তোমাদের রাজাকে ধ্বংস করবেন|”
1 সেই সময় শৌল সবে এক বছর রাজা হয়েছেন| ইস্রায়েলের ওপর দু-বছর রাজত্ব করবার পর, 2 তিনি ইস্রাযেল থেকে 3,000 পুরুষকে মনোনীত করলেন| বৈথেলের পাহাড়ে মিক্মস দেশে শৌলের সঙ্গে রইল 2,000 জন| 1,000 জন রইল য়োনাথনের কাছে| তারা ছিল বিন্যামীনের গিবিয়া শহরে| সৈন্যদলের বাকি লোকদের তিনি বাড়ী পাঠিয়ে দিলেন| 3 য়োনাথন গেবা শিবিরে পলেষ্টীয়দের প্রধান সেনাপতিকে হত্যা করল| এখবর শুনে পলেষ্টীয়রা বলল, “ইব্রীযেরা বিদ্রোহ করেছে|”শৌল বলল, “কি হয়েছে ইব্রীযেরা শুনুক|” শৌল তার লোকদের বলল সমস্ত ইস্রায়েলে তারা শিঙা বাজিযে দিক| 4 ইস্রায়েলীয়রা খবরটা শুনল| তারা বলল, “শৌল পলেষ্টীয় নেতাকে হত্যা করেছে| এবার পলেষ্টীয়রা সত্যিই ইস্রায়েলীয়দের ঘৃণা করবে!”ইস্রায়েলীয়দের বলা হল, তারা যেন গিল্গলে শৌলের সঙ্গে য়োগ দেয| 5 পলেষ্টীয়রা জড়ো হয়ে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল| পলেষ্টীয়দের ছিল 3,000 রথ আর 6,000 অশ্বারোহী সৈন্য| সমুদ্রের বালির মত পলেষ্টীয়দের অসংখ্য় সৈন্য ছিল| এদের শিবির পড়ল মিক্মসে| মিক্মস হচ্ছে বৈত্-আবনের পূর্ব দিকে| 6 ইস্রায়েলীয়রা দেখল তারা বিপদের মুখে| ফাঁদে পড়েছে বলে মনে হল তাদের| তারা পালিয়ে গিয়ে গুহায়, পাহাড়ের ফাঁকে ফোকরে লুকিয়ে রইল| লুকিয়ে রইল কুযোয, মাটির ভেতরে যে কোন গর্তের মধ্যে| 7 কিছু ইব্রীয যর্দন নদী পেরিযে গাদ আর গিলিয়দের দিকেও চলে গেল| শৌল তখনও গিল্গলে| তার সৈন্যরা সবাই ভয়ে কাঁপছে| 8 শমূয়েল বলল যে সে গিল্গলে শৌলের সঙ্গে দেখা করবে| শৌল তার জন্যে সাতদিন অপেক্ষা করে রইল| কিন্তু শমূয়েল তবুও গিল্গলে এল না| সৈন্যরা শৌলকে ছেড়ে চলে যেতে লাগল| 9 তখন শৌল বলল, “আমার কাছে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্যগুলি এনে দাও|” তারপর শৌল সেই হোমবলি উত্সর্গ করল| 10 শৌলের হোমবলি উত্সর্গ করা শেষ করতেই শমূয়েল এল| শৌল তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| 11 শমূয়েল বলল, “এ কি করেছ?”শৌল বললেন, “দেখলাম সৈন্যরা আমায় ছেড়ে চলে যাচ্ছে| তুমিও সময় মতো আসো নি| ওদিকে পলেষ্টীয়রা মিক্মসে জড়ো হয়েছে| 12 তখন আমি মনে মনে বললাম, ‘পলেষ্টীয়রা এখানে আসবে| ওরা গিল্গলে আমাকে আক্রমণ করবে| এখনও আমি প্রভুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি নি| তাই অবশেষে আমি নিজেই জোর করে হোমবলি উত্সর্গ করেছি|”‘ 13 শমূয়েল বলল, “খুব বোকামি করেছ! তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের কথা শোন নি| তাঁর আদেশ শুনলে তিনি তোমাদের পরিবারকে চিরকাল ইস্রাযেলকে শাসন করতে দিতেন| 14 কিন্তু এখন আর তোমার রাজত্ব স্থির থাকবে না| প্রভু এমনই একজনকে খুজছিলেন যে তাঁর কথা শুনবে| তিনি সেই লোক পেয়ে গেছেন| তিনি তাঁর প্রজাদের উপর নতুন নেতা হিসেবে তাকেই মনোনীত করেছেন| তুমি প্রভুর কথার বাধ্য হও নি বলেই তিনি নতুন নেতা নির্বাচন করেছেন|” 15 এই বলে শমূয়েল উঠে দাঁড়াল এবং গিল্গল থেকে চলে গেল|বাকি সৈন্যদের নিয়ে শৌল গিল্গল ছেড়ে বিন্যামীনের গিবিয়ায় চলে গেলেন| শৌল মাথা গুনে দেখলেন তাঁর সঙ্গে রযেছে প্রায 600 জন| 16 শৌল, তাঁর পুত্র য়োনাথন এবং সৈন্যরা বিন্যামীনের গিবিয়াতে গেল|পলেষ্টীয়রা মিক্মসে তাঁবু গেড়েছিল| 17 সেখানে যত ইস্রায়েলীয় ছিল তাদের পলেষ্টীয়রা শাযেস্তা করতে চাইল| তাদের সেরা সৈন্যরা আক্রমণের জন্য তৈরী হল| তারা তিনটি দলে ভাগ হয়ে গেল| একটা দল গেল উত্তরে, শূযালের কাছে অফ্রার রাস্তায়| 18 দ্বিতীয় দল গেল দক্ষিণ পূর্ব দিকে, বৈত্-হোরোণের রাস্তায়| তৃতীয় দল পূর্বদিকে, সীমান্তের পথে| সেই পথে মরুভূমির দিকে সিবোযিম উপত্যকা চোখে পড়ে| 19 ইস্রায়েলের কেউই লোহার জিনিসপত্র তৈরী করতে পারত না| ইস্রায়েলে কোন কামার ছিল না| পলেষ্টীয়রা ওদের এসব বানাতে শেখায়নি| কারণ তাদের ভয় ছিল, ইস্রায়েলীয়রা তাহলে লোহার তরবারি আর বর্শা তৈরী করে ফেলবে| 20 পলেষ্টীয়রাই শুধু লোহার জিনিসপত্র ধার দিতে পারত| সেই জন্য যদি ইস্রায়েলীয়দের লাঙল, নিড়ানি, কুড়ুল, কাস্তে শান দিতে হত, তাহলে তাদের পলেষ্টীয়দের কাছেই যেতে হত| 21 একটা লাঙল আর নিড়ানির জন্যে পলেষ্টীয়রা মজুরি নিত 1়/3 আউন্স রূপো| গাঁইতি, কুড়ুল, আর ষাঁড় খোঁচানো শাবল ধার করার জন্য নিত 1/6 আউন্স রূপো| 22 তাই যুদ্ধের দিন শৌলের কোন ইস্রায়েলীয় সৈন্যই লোহার তরবারি বা বর্শা নিয়ে যায় নি| শুধুমাত্র শৌল ও তাঁর পুত্র য়োনাথনের কাছেই লোহার অস্ত্র ছিল| 23 একদল পলেষ্টীয় সৈন্য মিক্মসের গিরিপথ পাহারা দিচ্ছিল|
1 সেদিন শৌলের পুত্র য়োনাথন তার অস্ত্রবাহকের সঙ্গে কথা বলছিল| য়োনাথন বলল, “উপত্যকার অন্যদিকে পলেষ্টীয়দের তাঁবু গেড়েছে| চলো সেদিকে যাওয়া যাক|” পিতাকে সে এ বিষযে কোন কথা বলল না| 2 শৌল তখন পাহাড়ের ধারে মিগ্রোন নামে একটা জায়গায় একটা ডালিম গাছের নীচে বসেছিলেন| এটা ছিল যেখানে ফসল ঝাড়াই হয় তারই কাছে| শৌলের সঙ্গে ছিল প্রায 600 জন লোক| 3 একজনের নাম ছিল অহিয| এলি শীলোয় প্রভুর যাজক ছিল| তার জায়গায় এখন অহিয নামে এক ব্যক্তি যাজক হল| সে পরল যাজকের এফোদ নামক বিশেষ পোশাক| অহিয ছিল ঈখাবোদের ভাই অহীটুবের পুত্র| ঈখাবোদের পিতার নাম পীনহস| পীনহসের পিতা ছিল এলি|লোকরা জানত না যে য়োনাথন চলে গিয়েছিল| 4 গিরিপথের উভয় পাশে একটা বড় শিলা ছিল| য়োনাথন ঠিক করল ঐ গিরিপথ দিয়ে সে পলেষ্টীয় শিবিরে পৌঁছবে, একটা শিলার নাম ছিল বোত্সেস; অন্য শিলাটির নাম ছিল সেনি| 5 একটি শিলা উত্তরে মিক্মস অভিমুখে ছিল এবং অন্যটি ছিল দক্ষিণে গেবার দিকে মুখ করা| 6 য়োনাথন তার অস্ত্রবাহক যুবক সহকারীকে বলল, “চলো আমরা ঐ বিদেশীদের তাঁবুর দিকে যাই| হয়তো ওদের হারিয়ে দিতে প্রভু আমাদের সাহায্য করতে পারেন| প্রভুকে কেউই থামাতে পারে না| আমাদের সৈন্য কম হোক্ বা বেশী এতে কিছু যায় আসে না|” 7 অস্ত্রবাহক যুবকটি তাকে বলল, “যা ভাল বোঝ, করো| আমি তোমার সঙ্গে সমস্ত ব্যাপারে থাকব|” 8 য়োনাথন বলল, “চলো এগোনো যাক! আমরা উপত্যকা পেরিযে পলেষ্টীয় প্রহরীদের দিকে যাব| এমন করব যেন তারা আমাদের দেখতে পায়| 9 যদি তারা বলে, ‘আমরা না আসা পর্য়ন্ত ওখানে দাঁড়াও,’ তাহলে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকব| আমরা ওদের দিকে এগোব না| 10 কিন্তু যদি পলেষ্টীয় লোকরা বলে, ‘এদিকে চলে এসো,’ তাহলে আমরা তাদের দিকে পাহাড় ডিঙিযে চলে যাব| কেন? কারণ সেটাই হবে ঈশ্বরের দেওয়া চিহ্ন বিশেষ| এর অর্থ হচ্ছে, প্রভু আমাদের সহায় হলেন যাতে ওদের হারিয়ে দিতে পারি|” 11 সেই মতো য়োনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী পলেষ্টীয়দের একটা সুয়োগ করে দিল ওরা যাতে তাদের দেখতে পায়| পলেষ্টীয় প্রহরীরা বলল, “দেখ, গর্ত থেকে ইব্রীযরা বেরিয়ে আসছে যেখানে তারা লুকিয়ে ছিল!” 12 দুর্গের ভেতর থেকে পলেষ্টীয়রা য়োনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারীকে চিত্কার করে বলল, “এগিয়ে এসো| আমরা তোমাদের উচিত্ শিক্ষা দেব!”য়োনাথন তার অস্ত্রবহনকারীকে বলল, “আমি পাহাড়ে উঠছি| আমার পিছন পিছন এসো| প্রভু ইস্রায়েলীয়দের দিয়ে পলেষ্টীয়দের পরাজিত করতে দিচ্ছেন!” 13 তাই য়োনাথন হামাগুড়ি দিয়ে পাহাড়ে উঠল| তার অস্ত্রবহনকারী ঠিক তার পিছনে| য়োনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী সেখানে ছিল না| ওরা দুজনে পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করল| প্রথম চোটেই তারা আধ একর জুড়ে 20 জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করল| সামনে থেকে যারা আক্রমণ করতে আসছিল য়োনাথন তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল| আর তার অস্ত্রবহনকারী পিছন পিছন এসে যারা শুধু আহত হয়েছিল তাদের মেরে ফেলল| 14 15 পলেষ্টীয় সৈন্যরা সকলেই বেশ ভয় পেয়ে গেল| মাঠে, শিবিরে, দুর্গে যে সব সৈন্য ছিল সকলেই ভয় পেয়ে গেল, এমনকি সবচেয়ে সাহসী যারা তারাও| মাটি কাঁপতে লাগল এবং তাতে পলেষ্টীয় বাহিনী সত্যিই বেশ ভয় পেয়ে গেল| 16 শৌলের প্রহরীরা ছিল বিন্যামীনের গিবিয়ায়| তারা দেখল পলেষ্টীয়রা যেদিকে পারছে পালাচ্ছে| 17 শৌল সৈন্যদের বললেন, “লোকগুলোকে গোন| ক’জন শিবির ছেড়ে গেছে দেখতে চাই|”ওরা লোক গুনতে শুরু করল| য়োনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী সেখানে ছিল না| 18 শৌল অহিযকে বললেন, “এবার ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক আনো|” (সেই সময় ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ছিল|) 19 শৌল যাজক অহিযর সঙ্গে কথা বলছিলেন| ঈশ্বরের উপদেশের জন্য তিনি অপেক্ষা করছিলেন| কিন্তু পলেষ্টীয়দের শিবিরে গোলমাল আর চেঁচামেচি ক্রমশঃ বেড়েই চলেছিল| শৌল অধৈর্য়্য় হয়ে পড়লেন| অবশেষে তিনি যাজক অহিযকে বললেন, “আর নয়, এবার হাত নামাও| প্রার্থনা শেষ করো|” 20 সৈন্যসামন্ত জড়ো করে নিয়ে শৌল যুদ্ধ করতে গেলেন| পলেষ্টীয় সৈন্যরা বিভ্রান্ত হয়ে গেল| এমনকি তারা তাদের তরবারি ব্যবহার করে একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছিল| 21 কিছু ইব্রীয আগে পলেষ্টীয়দের সেবা করত এবং তাদের শিবিরেই থাকত| কিন্তু এখন তারা শৌল আর য়োনথনের সঙ্গে মিশে গেল| তারা এখন ইস্রায়েলীয়দের দলে ভিড়ে গেল| 22 ইফ্রয়িমের পার্বত্য দেশে যেসব ইস্রায়েলীয় লুকিয়েছিল তারা পলেষ্টীয়দের পালিয়ে যাবার খবর শুনল| এখন এই ইস্রায়েলীয়রাও যুদ্ধে নেমে পলেষ্টীয়দের তাড়িয়ে দিতে শুরু করল| 23 এই ভাবে প্রভু সেদিন ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করলেন| যুদ্ধ চললো বৈত্-আবন ছাড়িযে| সমস্ত সৈন্য এখন শৌলের সঙ্গে| তারা সংখ্যায় প্রায 10,000 জন পুরুষ| পাহাড়ী অঞ্চলে ইফ্রয়িমের সমস্ত শহরগুলিতে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ল| 24 কিন্তু সেদিন শৌল একটা মস্ত ভুল করেছিলেন| ইস্রায়েলীয়রা ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছিল| এর কারণ শৌল| তিনি তাদের দিয়ে এই প্রতিশ্রুতি করিযেছিলেন যে সন্ধ্যার আগে এবং আমি শত্রুদের হারিয়ে দেবার আগে যদি কেউ খায় তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে| তাই কোন ইস্রায়েলীয় সৈন্য কিছু খায় নি| 25 যুদ্ধ করতে গিয়ে তারা বেশ কিছু জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল| তারপর তারা এক জায়গায় মাটির ওপরে একটি মৌচাক দেখল, কিন্তু মৌচাকের কাছে গিয়েও খেল না| প্রতিশ্রুতি ভাঙ্গতে তাদের ভয় করছিল| 26 27 কিন্তু য়োনাথন এই প্রতিশ্রুতির কথা জানত না| সে জানত না যে তার পিতা সৈন্যদের জোর করে এই প্রতিশ্রুতি করিযেছেন| য়োনাথনের হাতে ছিল একটি লাঠি| সে লাঠিটার একটা দিক মৌচাকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে কিছু মধু বের করে আনলো| মধু খেয়ে সে কিছুটা ভাল বোধ করল| 28 সৈন্যদের একজন য়োনাথনকে বলল, “তোমার পিতা সৈন্যদের এই বিশেষ প্রতিশ্রুতি করতে বাধ্য করেছিলেন| তোমার পিতা বলেছিলেন কেউ আজ খেলে শাস্তি পাবে| তাই কেউ কিছু খায় নি| সেই জন্য সকলে দুর্বল হয়ে পড়েছে|” 29 য়োনাথন বলল, “আমার পিতা এই দেশে অনেক অশান্তি নিয়ে এসেছে| এই দেখ সামান্য একটু মধু খেয়েই আমি কেমন সুস্থ বোধ করছি| 30 শত্রুদের কাছ থেকে খাবার আদায করে যদি লোকরা খেয়ে নিত তাহলে অনেক ভাল হতো| তাহলে আমরা আরো অনেক পলেষ্টীয়দের হত্যা কতে পারতাম!” 31 সেদিন ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিল| মিক্মস থেকে অযালোন পর্য়ন্ত সমস্ত জায়গায় ওরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই চালিযেছিল| ফলে তারা ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছিল| 32 পলেষ্টীয়দের মেষ, গরু, বাছুর সব তারা নিয়ে নিয়েছিল| এখন ইস্রায়েলের লোকরা প্রবল ক্ষুধায সেগুলো মাটিতে ফেলে হত্যা করে রক্তশুদ্ধ খেতে লাগল| 33 শৌলকে একজন বলল, “এই দেখ| লোকগুলো আবার প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করছে| রক্ত লেগে থাকা মাংস ওরা খাচ্ছে!”তখন শৌল বললেন, “তোমরা পাপ করেছ| এখানে একটা বড় পাথর গড়িযে দাও|” 34 তারপর শৌল বললেন, “যাও ওদের কাছে গিয়ে বলো, প্রত্যেকেই তার ষাঁড় আর মেষ যেন আমার কাছে নিয়ে আসে| তারপর ওরা এখানে এসে সে সব জন্তুকে যেন মারে| তোমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কোরো না| কখনও রক্ত মাখানো মাংস খেও না|”সেই রাত্রে প্রত্যেকেই নিজেদের পশু সেখানে নিয়ে এসে বলি দিল| 35 তারপর শৌল প্রভুর জন্য একটা বেদী তৈরী করলেন| শৌল নিজেই এই কাজটা করতে লাগলেন| 36 শৌল বললেন, “আজ রাত্রে চলো আমরা পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করি| তাদের সবকিছু আমরা কেড়ে নিয়ে একেবারে শেষ করে দিই|”সৈন্যরা বলল, “যা ভাল বোঝ করো|”কিন্তু যাজক বলল, “ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করে দেখা যাক|” 37 তখন শৌল ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করল, “আমি কি পলেষ্টীয়দের পিছু নিয়ে ওদের হটিযে দেব? আপনি কি ওদের পরাজয়ে আমাদের সাহায্য করবেন?” কিন্তু ঈশ্বর সেদিন কোন উত্তর দিলেন না| 38 তখন শৌল বললেন, “সমস্ত নেতাকে আমার কাছে ডেকে আনো| খুঁজে বের করা যাক আজ কে পাপ করেছে| 39 ইস্রাযেলকে যিনি রক্ষা করেন, সেই প্রভুর নামে আমি শপথ করে বলছি, পাপ যদি আমার পুত্র য়োনাথনও করে থাকে তবে তাকেও মরতে হবে|” কেউ কোন কথা বলল না| 40 শৌল সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বললেন, “তোমরা এদিকটায দাঁড়াও, আমি আর য়োনাথন ওদিকে দাঁড়াচ্ছি|”সৈন্যরা বলল, “যা বলবেন তাই হবে|” 41 তারপর শৌল প্রার্থনা শুরু করলেন| তিনি বললেন, “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, কেন আজ তোমার ভৃত্যকে কোনো উত্তর দিলে না? যদি আমি বা আমার পুত্র কোন দোষ করে থাকি, তবে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাদের ‘উরীম’ দাও| যদি তোমার ইস্রায়েলীয়রা কোন পাপ করে থাকে, তুমি তবে ‘তুম্মীম’ দাও| ‘উরীম’ আর ‘তুম্মীম’ ছুঁড়ে দেওয়া হল|শৌল ও য়োনাথন ধরা পড়ল এবং লোকরা বাদ পড়ল| 42 শৌল বললেন, “আবার ওগুলো ছুঁড়ে দেখো কে দোষী, আমি না আমার পুত্র য়োনাথন? এবার য়োনাথন ধরা পড়ল| 43 শৌল য়োনাথনকে বললেন, “কি করেছ বলো?”য়োনাথন বলল, “লাঠির মাথায় শুধু একটু মধু নিয়ে খেয়েছি| এর জন্য কি আমাকে মরতে হবে?” 44 শৌল বললেন, “আমি যে প্রতিশ্রুতি করেছি| প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে ঈশ্বর আমাকে শাস্তি দেবেন| সুতরাং য়োনাথন মরবেই|” 45 তখন সৈন্যরা শৌলকে বলল, “য়োনাথন আজ ইস্রায়েলের জয়ের নাযক| তাকে কি মরতেই হবে? কখনোই না| আমরা জীবন্ত ঈশ্বরের নামে দিব্য়ি করে বলছি, কেউ য়োনাথনের গায়ে হাত দেব না| তার একটি চুলও মাটিতে পড়বে না| বয়ং ঈশ্বর য়োনাথনকে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করেছেন|” এই ভাবে তারা য়োনাথনকে বাঁচাল| তাকে আর মরতে হল না| 46 শৌল পলেষ্টীয়দের পিছু নিলেন না| পলেষ্টীয়রা নিজেদের জায়গায় ফিরে এলো| 47 ইস্রায়েলের সম্পূর্ণ কর্ত্তৃত্ব শৌল নিজের হাতে নিলেন| ইস্রায়েলের চারিদিকে যত শত্রু ছিল, তাদের সঙ্গে তিনি যুদ্ধ চালালেন| তিনি মোযাব, অম্মোনীয়, সোবার রাজা ইদোম এবং পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন| শৌল যেখানে গেলেন সেখানেই ইস্রায়েলের শত্রুদের হারিয়ে দিলেন| 48 শৌল খুব সাহসী ছিলেন| সমস্ত শত্রু, যারা ইস্রায়েলীয়দের লুঠ করতে চাইছিল, তাদের হাত থেকে শৌল ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করেছিলেন| এমনকি অমালেক গোষ্ঠীকেও তিনি হারিয়ে দিয়েছিলেন| 49 শৌলের পুত্রদের নাম য়োনাথন, য়িশবি এবং মল্কীশূয| তাঁর বড় মেয়ের নাম মেরব, ছোট মেয়ে মীখল| 50 শৌলের স্ত্রীর নাম অহীনোযম| অহীনোযমের পিতা হচ্ছে অহীমাস|শৌলের সেনাপতি অবনের, সে ছিল নেরের পুত্র| নের শৌলের কাকা| 51 শৌলের পিতা কীশ এবং অব্নেরের পিতা নেব এঁরা দুজনে অবীযেলের পুত্র| 52 শৌল আজীবন সাহসী ছিলেন| তিনি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে প্রবলভাবে যুদ্ধ করেছিলেন| যখনই তিনি একটি শক্ত সমর্থ বা সাহসী লোক দেখতে পেতেন, তাকে তাঁর সৈন্যদলে যুক্ত করে নিতেন| এরা তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে কাছাকাছি থাকত|
1 একদিন শমূয়েল শৌলকে বলল, “প্রভু তোমায় ইস্রায়েলে তাঁর লোকদের রাজা হিসাবে অভিষেক করতে আমাকে পাঠিয়েছিলেন| তাই এখন প্রভুর বার্তা শোনো| 2 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন: ‘যখন ইস্রায়েলীয়রা মিশর থেকে বেরিয়ে আসছিল তখন অমালেকীয়রা তাদের কনানে যেতে বাধা দিয়েছিল| অমালেকীয়রা কি করেছে আমি সব দেখেছি| 3 এখন যাও, অমালেকীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো| ওদের তোমরা একেবারে শেষ করে দাও, ওদের সব কিছু ভেঙ্গে চুরে তছনছ করে দাও| কাউকে বাঁচতে দিও না| ছেলে মেয়ে কাউকে বাদ দেবে না| তাদের সমস্ত গরু, মেষ উটও তোমরা শেষ করে দেবে|” 4 শৌল টলাযীমে সমস্ত সৈন্য জড়ো করলেন| পদাতিক সৈন্য 2,00,000 জন আর অন্যান্যরা 10,000 জন| এদের মধ্যে যিহূদার লোকরাও ছিল| 5 তারপর শৌল চলে গেলেন অমালেকীয়দের শহরে| উপত্যকায গিয়ে তিনি অপেক্ষা করতে লাগলেন| 6 কেনীয়দের শৌল বলল, ‘তোমরা সবাই অমালেকীয়দের ছেড়ে দিয়ে চলে যাও| তাহলে আমি ওদের সঙ্গে তোমাদের বিনষ্ট করব না| যখন ইস্রায়েলীয়রা মিশর ছেড়ে চলে আসছিল, তোমরা ইস্রায়েলীয়দের দয়াদাক্ষিণ্য দেখিয়েছিল|” একথা শুনে কেনীয়রা অমালেকীয়দের ছেড়ে চলে গেল| 7 শৌল অমালেকীয়দের হারিয়ে দিলেন| তাদের তাড়িয়ে নিয়ে গেলেন সেই হবীলা থেকে শূর অবধি যেখানে মিশরের সীমানা| 8 অমালেকীয়দের রাজা ছিল অগাগ| শৌল জীবিত অবস্থায় অগাগকে বন্দী করেছিলেন এবং বাকী অমালেকীয়দের হত্যা করেছিলেন| 9 সব কিছু ধ্বংস করতে শৌলের এবং ইস্রায়েলীয়দের মন চাইল না| সেইজন্য তারা অগাগকে মেরে ফেলে নি| তাছাড়া পুষ্ট গাভী, সেরা মেষগুলোকেও তারা জীবিত রেখেছিল| সেই সঙ্গে আর যে সব জিনিস রেখে দেবার মতো, সেগুলোও রেখে দিয়েছিল| ঐগুলো তারা নষ্ট করতে চায নি| যেগুলো রাখার য়োগ্য় নয়, সেগুলোকে তারা নষ্ট করে দিয়েছিল| 10 শমূয়েল প্রভুর কাছ থেকে একটি বার্তা পেল| 11 প্রভু বললেন, “শৌল আমাকে মানছে না| ওকে রাজা করেছিলাম বলে আমার অনুশোচনা হচ্ছে| সে আমার কথামত কাজ করছে না|” শমূয়েল একথা শুনে ক্রুদ্ধ হল| সারারাত ধরে কেঁদে কেঁদে সে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল| 12 পরদিন খুব ভোরে শমূয়েল শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গেল| কিন্তু লোকরা শমূয়েলকে বলল, “শৌল যিহূদার কর্মিল শহরে চলে গেছেন| সেখানে তিনি নিজের সম্মান বাড়াতে একটা পাথরের মূর্ত্তি তৈরী করেছেন| তিনি এখন নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন| সবশেষে তিনি গিল্গলে যাবেন|”তাদের কথা শুনে শমূয়েল শৌল যেখানে ছিলেন সেখানে গেল| তখন শৌল সবে অমালেকীয়দের কাছ থেকে নেওয়া জিনিসগুলোর প্রথম অংশ প্রভুকে নিবেদন করেছিল| এগুলো সবই শৌল হোমবলি রূপে প্রভুকে উত্সর্গ করেছিল| 13 শমূয়েল শৌলের কাছে গেল| শৌল তাকে বললেন, “প্রভু তোমার মঙ্গল করুন| আমি প্রভুর নির্দেশ পালন করেছি|” 14 তখন শমূয়েল বলল, “তাহলে আমি কিসের শব্দ শুনলাম? আমি কেন মেষ আর গরুর ডাক শুনতে পেলাম?” 15 শৌল বললেন, “ওগুলো সৈন্যরা অমালেকীয়দের কাছ থেকে নিয়ে এসেছে| তারা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে হোমবলি হিসেবে উত্সর্গ করবার জন্য সবচেয়ে উত্কৃষ্ট মেষ আর গবাদি পশু প্রদান করেছিল| কিন্তু বাকি সবকিছুই আমরা শেষ করে দিয়েছি|” 16 শমূয়েল বলল, “চুপ করো| গত রাত্রে প্রভু আমাকে যা বলেছিলেন শোনো|”শৌল বললেন, “বেশ, বলো তিনি কি বলেছিলেন|” 17 শমূয়েল বলল, “অতীতে তুমি ভাবতে তুমি গুরুত্বহীন ছিলে| কিন্তু পরে তুমি হয়ে গেলে ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীর নেতা| প্রভু ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে তোমাকে মনোনীত করেছিলেন| 18 প্রভু তোমাকে একটা বিশেষ কাজে পাঠিয়েছিলেন| প্রভু বললেন, ‘যাও, সমস্ত অমালেকীয়দের হত্যা কর| কারণ তারা সবাই পাপী| সবাইকে শেষ করে দাও| তারা নিঃশেষে বিনষ্ট না হওয়া পর্য়ন্ত যুদ্ধ চালিযে যাও|’ 19 কিন্তু তুমি প্রভুর সে কথা শোন নি| কারণ তুমি জিনিসপত্র নিজের কাছে রেখে দিতে চেয়েছিলে, তাই প্রভুর কথা অনুযায়ীকাজ করো নি| তাঁর মতে যা খারাপ, সেই কাজ তুমি করেছ!” 20 শৌল বললেন, “কিন্তু আমি তো প্রভুর কথা পালন করেছি| তিনি আমায় যেখানে যেতে বলেছিলেন সেখানে গিয়েছিলাম| আমি অমালেকীয়দের সবাইকে হত্যা করেছি| কেবলমাত্র একজনকেই আমি এনে রেখেছি| তিনি হচ্ছেন তাদের রাজা, অগাগ| 21 আর সৈন্যরা নিয়েছে সেরা মেষ এবং গরু| তাদের বলি দিতে হবে গিল্গলে তোমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে|” 22 শমূয়েল বলল, “কিন্তু প্রভু কিসে সবচেয়ে বেশী খুশী হন? হোমবলিতে না তাঁর আদেশ পালনে? বলির চেয়ে তাঁর আদেশ পালন করাই শ্রেয| ভেড়ার চর্বি উত্সর্গ করার চেয়ে ঈশ্বরের বাধ্য হওয়া অনেক ভালো| 23 ঈশ্বরের অবাধ্যতা করা মাযাবিদ্য়ার পাপের মতোই খারাপ| একগুঁযেমি করা এবং তুমি যা চাও তা করা মূর্ত্তিপূজো করার পাপের মতোই ততটা খারাপ| প্রভুর আদেশ তুমি অমান্য করেছ| তাই তিনি তোমাকে রাজা হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করছেন|” 24 এর উত্তরে শৌল শমূয়েলকে বললেন, “আমি পাপ করেছি| প্রভুর আদেশ আমি শুনি নি, তোমার কথাও আমি শুনি নি| লোকদের আমি ভয় পাই, তারা যা চায আমি তাই করেছি| 25 আমার এই পাপের জন্য তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি| আমার সঙ্গে ফিরে চলো, যেন আমি প্রভুকে উপাসনা করতে পারি|” 26 শমূয়েল বলল, “না তোমার সঙ্গে যাব না| তুমি প্রভুর আদেশ মানো নি| তাই প্রভুও ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে তোমাকে অস্বীকার করেছেন|” 27 শমূয়েল যখন যাবার জন্য পা বাড়িযেছে, এমন সময় শৌল তাঁর পোশাকটি খপ করে ধরে ফেললেন এবং সেটি ছিঁড়ে গেল| 28 শমূয়েল শৌলকে বলল, “তুমি যেভাবে আমার আলখাল্লা ছিঁড়ে নিয়েছ সেই ভাবেই প্রভু আজ ইস্রাযেল রাজ্য তোমার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছেন| তিনি এই রাজ্য দিয়েছেন তোমারই বন্ধুদের মধ্যে একজনকে| সে তোমার চেয়ে ভাল লোক| 29 প্রভু হচ্ছেন ম্পস্রাযেলের ঈশ্বর| তিনি অমর| তিনি মিথ্য়া বলেন না, মত বদলান না| তিনি মানুষের মতো নন| মানুষই ঘন ঘন মত বদলায|” 30 শৌল বললেন, “স্বীকার করছি, আমি পাপ করেছি| কিন্তু দয়া করে আমার সঙ্গে ফিরে আসুন| প্রবীণদের এবং ইস্রায়েলের লোকদের সামনে আমার সম্মান রাখুন যেন আমি আপনার প্রভু ও ঈশ্বরকে প্রণাম করতে পারি|” 31 শমূয়েল শৌলের সঙ্গে ফিরে এলে শৌল প্রভুকে উপাসনা করলেন| 32 শমূয়েল বলল, “অমালেকীয়দের রাজা অগাগকে আমার কাছে নিয়ে এসো|”অগাগ শমূযেলের কাছে এল| তাকে শিকল দিয়ে বাঁধা হয়েছিল| অগাগ মনে করল, “সে নিশ্চয়ই আমাকে মেরে ফেলবে না|” 33 কিন্তু শমূয়েল অগাগকে বলল, “তোমার তরবারি কত মাযের কোল খালি করেছে| এবার তোমার মাযেরও সেই দশা হবে|” এই বলে শমূয়েল গিল্গলে প্রভুর সামনে অগাগকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলল| 34 তারপর শমূয়েল রামাতে চলে গেল| শৌল গিবিয়ায় তাঁর বাড়িতে চলে গেলেন| 35 এরপর শমূয়েল তার জীবনে আর কখনও শৌলকে দেখতে পায় নি| সে শৌলের জন্যে খুব দুঃখ বোধ করল| এমনকি প্রভুও শৌলকে ইস্রায়েলের রাজা করেছিলেন বলে খুব দুঃখ পেয়েছিলেন|
1 প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “শৌলের জন্য আর কতদিন তুমি দুঃখ বোধ করবে? শৌলকে আমি ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে অস্বীকার করেছি একথা তোমাকে বলবার পরও তুমি ওর জন্য দুঃখ করছ| শিঙায তেল ভর্তি করে বৈত্লেহেমে যাও| তোমাকে আমি একজনের কাছে পাঠাচ্ছি| তার নাম যিশয় ও বৈত্লেহমেই থাকে| তারই একজন পুত্রকে আমি নতুন রাজা হিসাবে মনোনীত করেছি|” 2 তখন শমূয়েল বলল, “আমি যদি যাই তবে শৌল জানতে পারবে| তখন সে আমায় হত্যা করতে চাইবে|”প্রভু বললেন, “তুমি বৈত্লেহমে যাও| সঙ্গে একটা বাছুরকে নিও| তুমি বলবে, ‘আমি প্রভুর কাছে একে বলি দিতে এসেছি|’ 3 যিশয়কে এই বলি দেখতে আমন্ত্রণ জানাবে| তারপর কি করবে আমি বলে দেব| যাকে আমি দেখিয়ে দেব তার মাথায় জলপাই তেল ঢেলে দিও|” 4 প্রভুর কথামতো শমূয়েল যা যা করার করল| সে বৈত্লেহমে চলে গেল| সেখানকার প্রবীণরা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে এল| শমূযেলের সঙ্গে দেখা করে তারা বলল, “আপনি কি শান্তির ভাব নিয়ে এসেছেন?” 5 শমূয়েল জবাব দিল, “হ্যাঁ, আমি শান্তির ভাব নিয়েই এসেছি| আমি প্রভুর কাছে একটা বলি দিতে এসেছি| তোমরা তৈরী হও| আমার সঙ্গে বলিদানে এসো|” শমূয়েল যিশয় আর তার পুত্রদের প্রস্তুত করে বলিদানের অনুষ্ঠান দেখবার জন্য ডেকে আনল| 6 যিশয় তার পুত্রদের নিয়ে পৌঁছলে শমূয়েল ইলিয়াবকে দেখতে পেল| শমূয়েল ভাবল, “এই সেই যাকে প্রভু বিশেষভাবে পছন্দ করেছেন|” 7 কিন্তু প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “ইলীয়াব লম্বা আর সুন্দর দেখতে হলেও এভাবে ব্যাপারটা দেখো না| লোকে যেভাবে কোন জিনিস দেখে বিচার করে ঈশ্বর সেভাবে করেন না| লোকরা মানুষের বাইরের রূপটাই দেখে, কিন্তু ঈশ্বর দেখেন তার অন্তরের রূপ| সেদিক থেকে ইলীয়াব উপযুক্ত লোক নয়|” 8 তখন যিশয় তার দ্বিতীয় পুত্র অবীনাদবকে ডাকলো| অবীনাদব শমূয়েলের পাশ দিয়ে হেঁটে গেল| শমূয়েল বলল, “না একেও প্রভু মনোনীত করেন নি|” 9 একথা শুনে যিশয় শম্মকে শমূযেলের পাশে আসতে বলল| শমূয়েল বলল, “না এও চলবে না|” 10 যিশয় শমূয়েলকে তার সাত পুত্রকে দেখাল| শমূয়েল বলল, “প্রভু এদের একজনকেও মনোনীত করেন নি|” 11 শমূয়েল বলল, “তোমার পুত্র বলতে এরাই কি সব?”যিশয় বলল, “না আমার আরেকটা পুত্র আছে| সে সবচেয়ে ছোট, কিন্তু সে এখন মেষ চরাচ্ছে|”শমূয়েল বলল, “তাকে ডেকে নিয়ে এসো| সে না আসা পর্য়ন্ত আমরা কেউ খেতে বসব না|” 12 যিশয় একজনকে পাঠালো তার ছোট ছেলেটিকে ডেকে আনতে| তার ছোট ছেলেটি দেখতে ভাল, রক্ত বর্ণের যুবক|প্রভু শমূয়েলকে বলল, “এই তো সেই ছেলে| ওঠো, একে অভিষেক করো|” 13 শমূয়েল তেল ভর্তি শিঙাটা নিয়ে য়িশযের সব চেয়ে ছোট ছেলেটার মাথায় ঢেলে দিল| তার ভাই়রা এই ঘটনা দেখল| সেদিন থেকেই প্রভুর আত্মা মহাশক্তিতে দাযূদের ওপর এল| এরপর শমূয়েল রামায় ফিরে এল| 14 প্রভুর আত্মা শৌলকে ছেড়ে চলে গেলেন| তখন শৌলের কাছে প্রভু এক দুষ্ট আত্মা পাঠালেন| এর ফলে তিনি বেশ মুশকিলে পড়লেন| 15 শৌলের ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা এসে আপনাকে উদ্বিগ্ন করছে|” 16 যদি আপনি আদেশ করেন তাহলে একজন বীণা বাজিযেকে খুঁজে আনি| প্রভুর কাছ থেকে দুষ্ট আত্মা এলে সে বীণা বাজাবে| তখন আপনি বেশ ভালো বোধ করবেন|” 17 শৌল বললেন, “তাহলে একজন ভালো বাজিয়েকে আমার কাছে নিয়ে এসো|” 18 একজন ভৃত্য বলল, “যিশয় নামে এক ব্যক্তি আছেন যিনি বৈত্লেহমে বাস করেন| আমি যিশয়ের পুত্রকে দেখেছি সে বীণা বাজাতে জানে| সে সাহসী এবং যুদ্ধ করতেও জানে| সে চতুর, দেখতেও সুন্দর| বয়ং প্রভু তার সহায়|” 19 তাই শৌল য়িশযের কাছে কযেকজন দূত পাঠাল| তারা যিশয়কে বলল, “তোমার দায়ূদ নামে একজন পুত্র আছে, সে তোমার মেষদের দেখাশোনা করে| ওকে আমাদের কাছে ডেকে আনো|” 20 যিশয় শৌলের জন্য কিছু উপহার জোগাড় করলো| যিশয় একটা গাধা, কিছু রুটি, এক বোতল দ্রাক্ষারস আর একটা কচি ছাগল দাযূদের হাতে করে শৌলের কাছে পাঠালো| 21 দায়ূদ শৌলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে শৌল দায়ূদকে খুব ভালবেসে ফেললেন| দায়ূদ শৌলের সহকারী হয়ে শৌলের অস্ত্র বইতে লাগল| 22 শৌল য়িশযের কাছে খবর পাঠিয়ে জানিয়ে দিলেন, “দায়ূদ এখানেই থাকুক, ামার কাজকর্ম করুক| আমার ওকে খুব ভাল লেগেছে| 23 যখনই ঈশ্বর হতে শৌলের ওপর দুষ্ট আত্মা আসত, তখন দায়ূদ বীণা তুলে নিয়ে বাজাতেন| সঙ্গে সঙ্গে দুষ্ট আত্মা শৌলকে ছেড়ে যেত, আর তিনি আরাম বোধ করতেন|”
1 পলেষ্টীয়রা যুদ্ধের জন্যে সৈন্য জড়ো করতে লাগল| যিহূদার সোখোতে তারা জড়ো হল| সোখোর আর অসেকার মাঝখানে তাদের তাঁবু পড়লো| জায়গাটা ছিল এফস্দম্মীম নামে একটা শহরে| 2 শৌল এবং ইস্রায়েলের সৈন্যরা একত্র হল| এলা উপত্যকায তাদের তাঁবু পড়ল| শৌলের সৈন্যরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধের জন্যে তৈরী হল| 3 পলেষ্টীয়রা একটা পাহাড়ে, ইস্রায়েলীয়রা আর একটাতে| উপত্যকাটা এই দুটো পাহাড়ের মাঝখানে| 4 4পলেষ্টীয়দের মধ্যে একজন বিজয়ী য়োদ্ধা ছিল| তার নাম গলিযাত্| সে গাত্ থেকে এসেছিল| তার দেহ বিশাল লম্বা ছিল 9 ফুটেরও বেশী| পলেষ্টীয় শিবির থেকে সে বেরিয়ে এলো| 5 তার মাথায় পিতলের শিরস্ত্রাণ| গায়ে মাছের আঁশের মতো দেখতে একটা বর্মা সেটা ছিল পিতলের তৈরী, ওজন প্রায 125 পাউণ্ড| 6 গলিযাতের পাযেও ছিল পিতলের বর্মা তার পিঠে ছিল পিতলের বর্শা| 7 তার বর্শার কাঠের দণ্ডটা ছিল তাঁতির লাঠির মতো লম্বা| বর্শার ফলকের ওজন 15 পাউণ্ড| গলিযাতের ঢাল নিয়ে তার সহকারী আগে আগে হাঁটত| 8 প্রত্যেকদিন গলিযাত্ বেরিয়ে এসে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের দিকে যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়ে বলত, “কেন তোমরা যুদ্ধের জন্য সারবন্দি দাঁড়িয়ে? তোমরা শৌলের ভৃত্য| আমি একজন পলেষ্টীয়| একজনকে তোমরা বেছে নাও, তাকে আমার সঙ্গে লড়বার জন্য পাঠিয়ে দাও| 9 যদি সে আমাকে হত্যা করে তাহলে আমরা পলেষ্টীয়রা সকলেই তোমাদের ক্রীতদাস হব| কিন্তু আমি যদি তাকে হত্যা করি, তাহলে তোমাদের সবাইকে আমাদের ক্রীতদাস হতে হবে এবং আমাদের সেবা করতে হবে|” 10 পলেষ্টীয়রা আরো বলল, “এই আমি এখানে দাঁড়িয়ে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করছি| সাহস থাকে তো একজনকে পাঠিয়ে দাও| আমার সঙ্গে হয়ে যাক এক হাত লড়াই|” 11 শৌল এবং ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা গলিযাতের এই সব আস্ফালন শুনে বেশ ভয় পেয়ে গেল| 12 দায়ূদ ছিলেন য়িশযের পুত্র| যিশয় যিহূদার বৈত্লেহমে ইফ্রাথা বংশের লোক| তার আট জন পুত্র ছিল| শৌলের আমলে যিশয় বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন| 13 য়িশযের প্রথম তিনটি পুত্র শৌলের সঙ্গে যুদ্ধে গিয়েছিল| প্রথম পুত্রের নাম ইলীয়াব| দ্বিতীয় জনের নাম অমীনাদব, তৃতীয় নাম শম্ম| 14 সবচেয়ে যে ছোট তার নাম দায়ূদ| ওঁর তিন দাদা শৌলের সৈন্যদলে য়োগ দিয়েছিল| 15 কিন্তু দায়ূদ মাঝে মধ্যেই শৌলকে ছেড়ে বৈত্লেহমে তাঁর পিতার কাছে চলে যেতেন| সেখানে তিনি মেষগুলোর দেখাশুনা করতেন| 16 সেই পলেষ্টীয় (গলিযাত্) প্রতিদিন সকালে আর সন্ধ্যায বেরিয়ে এসে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের সামনে দাঁড়িয়ে হাসি মস্করা করত| এইভাবে 40 দিন কেটে গেল| 17 একদিন যিশয় তাঁর পুত্র দায়ূদকে বললেন, “এক ঝুড়ি ভাজা শস্য আর দশটা গোটা পাঁউরুটি নিয়ে শিবিরে তোমার দাদাদের কাছে যাও| 18 তাছাড়া দশ টুকরো পনিরও নিয়ে যেও| তোমাদের দাদারা যার অধীনে যুদ্ধ করছে সেই সেনাপতিকে এটা দেবে| সে 1,000 জন সৈন্যের সেনাপতি| তোমার ভাম্পদের কুশল সংবাদ নাও| ওরা যে ভাল আছে সে রকম কিছু চিহ্ন নিয়ে এসো| 19 তোমার ভাম্পরা এল| উপত্যকায শৌল আর ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের সঙ্গে রযেছে| তারা সেখানে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য রযেছে|” 20 য়িশযের কথা মতো ভোরবেলায দায়ূদ একজন রাখালের ওপর মেষগুলো দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে খাবার দাবার নিয়ে চলে গেলেন| দায়ূদ শিবিরে ঠেলাগাড়ী চালিযে নিয়ে গেলেন| সেখানে পৌঁছে তিনি দেখলেন সৈন্যরা যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে যাচ্ছে| ওরা সিংহনাদ দিতে থাকল| 21 ইস্রায়েলীয়রা ও পলেষ্টীয়রা সারিবদ্ধ হয়েছিল এবং যুদ্ধের জন্য তৈরী হয়েছিল| 22 যে খাবার-দাবার য়োগান দেয তার কাছে সব কিছু রেখে দিয়ে দায়ূদ বেরিয়ে পড়লেন| যেদিকে ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা দাঁড়িয়েছিল, সেদিকে তিনি দ্রুত চলে গেলেন| সেখানে গিয়ে তিনি দাদাদের খোঁজ খবর নিলেন| 23 তারপর ওদের সঙ্গে দেখা করে দায়ূদ একথা বলতে লাগলেন| তারপর গাতের সেরা য়োদ্ধা গলিযাত্ তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলো এবং যথারীতি ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে গর্জাতে লাগল| তার কথাগুলো দায়ূদ সবই শুনলেন| 24 গলিযাতকে দেখে ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা ভয় পেয়ে পালিয়ে গেল| 25 একজন ইস্রায়েলীয় বলল, “লোকটাকে দেখেছ? একবার ওর দিকে দেখ| গলিযাত্ বারবার বেরিয়ে আসছিল এবং ইস্রাযেলকে নিয়ে মজা করছিল| যে ওকে মেরে ফেলবে তাকে রাজা শৌল প্রচুর টাকা পয়সা দেবে| গলিযাতকে যে হত্যা করবে, তার সঙ্গে শৌল তার কন্যার বিয়ে দেবে| শুধু তাই নয়, শৌল তার পরিবারকে ইস্রায়েলে স্বাধীনথাকতে দেবে|” 26 কাছে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “ও কি বলছে? পলেষ্টীয়কে হত্যা করলে, এবং ইস্রায়েলীয়দের লজ্জা মুছে দিতে পারলে কি পুরস্কার দেওয়া হবে? গলিযাত্ লোকটা কে? সে তো একজন বিদেশী ছাড়া কেউ নয়| সে একজন পলেষ্টীয় এই যা| সে কি করে ভাবতে পারল যে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যদের বিরুদ্ধে গালমন্দ করতে পারে?” 27 একথা শুনে ইস্রায়েলীয়রা গলিযাতকে মারলে কি পুরস্কার পাওয়া যাবে সেসব দায়ূদকে জানাল| 28 দাযূদের বড়দা ইলীয়াব যখন শুনলো দায়ূদ সৈন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে, তখন সে রেগে গেল| সে দায়ূদকে বলল, “তুমি এখানে কেন? কার হাতে তুমি মরুভূমি অঞ্চলে মেষগুলোর দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়ে এলে? কেন এখানে এসেছ সেকি আমি জানি না ভেবেছ? তোমাকে যা বলা হয়েছিল সেগুলো তুমি করতে চাও না| তুমি শুধু যুদ্ধ দেখবার জন্যই এখানে আসতে চেয়েছ|” 29 দায়ূদ বললেন, “আমি কি করেছি? আমি তো কোন অন্যায় করি নি, শুধু কথা বলছিলাম মাত্র|” 30 এই কথা বলে দায়ূদ অন্যান্য লোকের দিকে ফিরে সেই একই কথা জিজ্ঞেস করলেন| তারা তাঁকে আগের মত ঐ একই উত্তর দিল| 31 কযেক জন লোক দায়ূদকে কথা বলতে দেখল| তারা দায়ূদকে শৌলের কাছে নিয়ে গেলো| শৌলকে তারা বলল, দায়ূদ কি বলেছিল| 32 দায়ূদ শৌলকে বললেন, “লোকরা যেন গলিযাতকে নিরুত্সাহিত করে না দেয| আমি তোমার ভৃত্য| আমি এই পলেষ্টীয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই|” 33 শৌল বললেন, “তুমি তা করতে পারো না| তুমি তো একজন সৈনিকও নও|আর গলিযাত্ তো ছোটবেলা থেকেই যুদ্ধ করছে|” 34 তখন দায়ূদ শৌলকে বললেন, “আমি তোমার ভৃত্য, পিতার মেষগুলোর দেখাশুনা করছিলাম| একটা সিংহ আর একটা ভাল্লুক পাল থেকে একটা মেষ নিয়ে গেল| 35 আমি ঐ জন্তুটার পেছনে ধাওযা করে ওটার মুখ থেকে মেষটাকে টেনে বের করে নিয়ে এলাম| জন্তুটা আমার ওপর ঝাঁপিযে পড়ল| তখন আমি ওর দাড়ি ধরে টেনে জোরে এমন আঘাত করলাম যে সেটা মরে গেল| 36 একটা সিংহ আর একটা ভাল্লুককে আমি শেষ করে দিয়েছি| এরপর আমি এই বিদেশী গলিযাতকে ওদের মতোই হত্যা করব| গলিযাত্ মরবেই কারণ সে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যবাহিনীকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করেছে| 37 প্রভু আমাকে সিংহ আর ভাল্লুকের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন| এই পলেষ্টীয়দের হাত থেকে তিনি আমার রক্ষা করবেন|”শৌল দায়ূদকে বললেন, “তবে যাও| প্রভু তোমার সহায় হোন|” 38 এই বলে শৌল তাঁর পোশাক দায়ূদকে পরিযে দিলেন| ওর মাথায় চড়িযে দিলেন পিতলের শিরস্ত্রাণ আর দেহে দিলেন পিতলের বর্ম| 39 দায়ূদ কোমরে তরবারি নিলেন| একটু ঘুরে ফিরে বেড়িযে দেখলেন সব ঠিক আছে কি না| তিনি শৌলের পোশাকটা পরার চেষ্টা করলেন কিন্তু তিনি এমন ভারী জিনিস পরতে অভ্য়স্ত ছিলেন না|তাই তিনি শৌলকে বললেন, “আমি এইসব জিনিস নিয়ে লড়াই করতে পারব না| আমি ওগুলোতে অভ্য়স্ত নই|” তারপর তিনি ওগুলো সব খুলে ফেললেন| 40 তারপর তিনি তাঁর বেড়ানোর ছড়িটা হাতে নিয়ে নদীর ধারে গিয়ে পাঁচটা নিটোল নুড়ি পাথর তুলে নিলেন| সেগুলো তিনি মেষপালকের থলেতে রাখলেন| হাতে গুলতি নিয়ে গেলেন গলিযাতের মুখোমুখি হতে| 41 পলেষ্টীয় ধীরে ধীরে দাযূদের দিকে এগিয়ে এলো| গলিযাতের অস্ত্রবাহক ঢাল নিয়ে ওর আগে-আগে চললো| 42 দায়ূদকে দেখে গলিযাত্ হাসলো| সে দেখল দায়ূদ ঠিক সৈন্য নয়, কিন্তু লাল মুখো একজন সুদর্শন বালক| 43 গলিযাত্ দায়ূদকে জিজ্ঞাসা করল, “এই লাঠিটা কিসের জন্য? তুমি কি এটা দিয়ে কুকুরের মতো আমায় তাড়াবে?” এই বলে সে তার দেবতাদের নাম নিয়ে দায়ূদকে গালমন্দ করতে লাগল| 44 গলিযাত্ বলল, “আয তোর দেহটাকে নিয়ে পাখি আর জানোযারদের খাওয়াই|” 45 দায়ূদ পলেষ্টীয়কে বললেন, “তুমি তো তরবারি, বর্শা, বল্লম নিয়ে আমার কাছে এসেছ| কিন্তু আমি এসেছি সর্বশক্তিমান প্রভুর নাম নিয়ে| এই প্রভুই ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের ঈশ্বর| তুমি তাঁকে নিয়ে অনেক অকথা কুকথা বলেছ| 46 আজ প্রভুর দয়ায় আমি তোমাকে পরাজিত করব| তোমাকে আজ আমি হত্যা করব| তোমার মুণ্ড কেটে নিয়ে জন্তু জানোযারদের আর পাখীদের খাওয়াব| শুধু তুমি নয়, সব পলেষ্টীয়দের ঐ একই অবস্থা করব| তখন পৃথিবীর সমস্ত মানুষ জানবে, ইস্রায়েলে একজন ঈশ্বর আছেন| 47 এখানে যারা এসেছে তারা সবাই জানবে যে মানুষকে বাঁচাতে প্রভুর কোন তরবারি বা বল্লমের দরকার হয় না| এতো প্রভুরই যুদ্ধ| পলেষ্টীয়দের হারাতে প্রভুই আমাদের সহায়ক|” 48 গলিযাত্ দায়ূদকে আক্রমণ করতে উদ্যত হল| সে একটু একটু করে দাযূদের কাছে ঘেঁষে এল| তখন দায়ূদ ওর দিকে ছুটে গেলেন| 49 দায়ূদ থলে থেকে একটা পাথর বের করলেন| সেটাকে তাঁর গুলতির মধ্যে রেখে তিনি ছুঁড়লেন| গুলতি থেকে পাথরটি ছিটকে গিয়ে একেবারে গলিযাতের দু চোখের মাঝখানে পড়ে ওর মাথার ভেতর অনেকখানি ঢুকে গেল| গলিযাত্ মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে গেল| 50 এইভাবে শুধু একটা গুলতি আর একটি পাথর দিয়েই দায়ূদ এই পলেষ্টীয়কে হারিয়ে দিলেন এবং আঘাত করে মেরে ফেললেন| দাযূদের হাতে কোন তরবারি ছিল না| 51 তাই দায়ূদ গলিযাতের শরীরের কাছে দৌড়ে গেলেন| তিনি গলিযাতের তরবারির খাপ থেকে তরবারি বের করে গলিযাতের মুণ্ড কেটে ফেললেন| এই ভাবেই তিনি গলিযাতকে হত্যা করলেন|তাদের নাযককে মৃত দেখে অন্যান্য পলেষ্টীয়রা দৌড় লাগাল| 52 ইস্রায়েলীয়রা আর যিহূদার সৈন্যরা হৈ-হৈ করতে করতে পলেষ্টীয়দের তাড়া করল| এই ভাবে তারা ধাওযা করল গাত্ শহরের সীমানা আর ইক্রোণের ফটক পর্য়ন্ত| তারা অনেক পলেষ্টীয়কে হত্যা করল| শারাইমের রাস্তা ধরে গাত্ আর ইক্রোণ পর্য়ন্ত তাদের মৃতদেহ ছড়িয়ে পড়েছিল| 53 পলেষ্টীয়দের তাড়িয়ে নিয়ে যাবার পর ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের শিবিরে ফিরে এসে অনেক জিনিসপত্র লুঠ করল| 54 গলিযাতের মুণ্ড নিয়ে দায়ূদ জেরুশালেমে চলে এলেন| তিনি গলিযাতের অস্ত্রশস্ত্রগুলো নিজের তাঁবুতে রেখে দিলেন| 55 শৌল দায়ূদকে গলিযাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতে দেখলেন| সেনাপতি অবনেরকে শৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “অব্নের, এ বালকটির পিতা কে বলো তো?”অব্নের বলল, “দিব্য করে বলছি, আমি জানি না.” 56 রাজা শৌল বললেন, “ওর পিতাকে খুঁজে বের করো|” 57 গলিযাতকে হত্যা করে দায়ূদ যখন ফিরে এলেন তখন অবনের তাকে শৌলের কাছে নিয়ে এলো| দাযূদের হাতে তখন গলিযাতের কাটা মুণ্ড| 58 শৌল দায়ূদকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যুবক তোমার পিতা কে?”দায়ূদ উত্তর দিলেন, “আমি আপনার ভৃত্য বৈত্লেহমের য়িশযের পুত্র|”
1 শৌলের সঙ্গে দাযূদের কথাবার্তার পর শৌল দাযূদের বেশ অন্তরঙ্গ হয়ে উঠলেন| তিনি নিজেকে যতটা ভালবাসতেন, দায়ূদকেও ততটা ভালবেসেছিলেন| 2 সে দিন থেকে, শৌল দায়ূদকে তাঁর কাছে রেখে দিলেন| তিনি দায়ূদকে তাঁর পিতার কাছে ফিরে যেতে দিলেন না| 3 য়োনাথন দায়ূদকে খুব ভালবাসত| সে দাযূদের সঙ্গে একটা চুক্তি করল| 4 য়োনাথন নিজের গা থেকে কোট খুলে দায়ূদকে দিল| তার পোশাকও সে দায়ূদকে দিয়ে দিল| এমন কি সে তার ধনুক, তরবারি ও কোমরবন্ধও ওঁকে দিয়ে দিল| 5 শৌল দায়ূদকে নানা জায়গায় যুদ্ধ করতে পাঠালেন| প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দায়ূদ ভালভাবেই সফল হলেন| তারপর শৌল তাঁকে সৈন্যদের অধিনাযক করে দিলেন| এতে সকলেই খুশী হল, এমনকি শৌলের সৈন্যবাহিনীর পদস্থ কর্মীরাও| 6 দায়ূদ পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন| যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে ইস্রায়েলের প্রতিটি শহর থেকে মেয়েরা তাঁকে দেখবার জন্য বেরিয়ে এল| তারা তবলা ও বীণা বাজিযে আনন্দ উল্লাস করল এবং নাচল| তারা এসব শৌলের সামনেই করল| 7 স্ত্রীলোকরা গাইল, “শৌল বধিলেন শত্রু হাজারে হাজারে, আর দায়ূদ বধিলেন অয়ুতে অয়ুতে|” 8 তাদের এই গান শুনে শৌলের মন খারাপ হয়ে গেল| তিনি খুব রেগে গেলেন| তিনি ভাবলেন, “স্ত্রীলোকরা ভাবছে যে দায়ূদ লাখে লাখে শত্রু বধ করছে আর আমি মেরেছি কেবল হাজারে হাজারে| রাজত্ব ছাড়া আর কি সে পেতে পারে?” 9 এরপর সেই দিন থেকে শৌল দায়ূদকে খুব সতর্কভাবে লক্ষ্য করতে লাগলেন| 10 ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা এসে পরদিন শৌলের ওপর ভর করল| শৌল বাড়িতে প্রলাপ বকতে লাগলেন| দায়ূদ রোজকার মত বীণা বাজালেন| 11 কিন্তু শৌলের হাতে বর্শা ছিল| তিনি মনে মনে ভাবলেন, “আমি দায়ূদকে দেওয়ালের সঙ্গে গেঁথে দেব|” তিনি দু-দুবার দাযূদের দিকে বর্শা ছুঁড়েও দিলেন| কিন্তু দুবারই দায়ূদ নিজেকে বাঁচিয়েছিলেন| 12 প্রভু দাযূদের সহায় ছিলেন| তিনি শৌলকে ত্যাগ করেছিলেন| শৌল তাই দায়ূদকে ভয় করতেন| 13 তিনি দায়ূদকে তাঁর কাছ থেকে দূর করে দিলেন| শৌল তাঁকে 1,000 সৈন্যের অধিনাযক করেছিলেন| দায়ূদ যুদ্ধে তাঁদের নেতৃত্ব দিলেন| 14 প্রভু ছিলেন দাযূদের সহায়| তাই দায়ূদ সব কাজেই সফল হতেন| 15 শৌল দাযূদের সাফল্য দেখতে দেখতে দায়ূদকে আরও বেশী ভয় করতে লাগলেন| 16 কিন্তু ইস্রাযেল ও যিহূদার সমস্ত লোক দায়ূদকে ভালোবাসত| কারণ দায়ূদ তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেতেন এবং তাদের হয়ে যুদ্ধ করতেন| 17 এদিকে শৌল দায়ূদকে মারতে চান| তিনি একটা মতলব আঁটলেন| তিনি দায়ূদকে বললেন, “আমার বড় মেয়ের নাম মেরব| তুমি তাকে বিয়ে কর| তাহলে তুমি আরও শক্তিশালী সৈন্য হতে পারবে| তুমি আমার পুত্রের মতো হবে| প্রভুর জন্য সব যুদ্ধক্ষেত্রে তুমি যুদ্ধ করবে!এসব ছিল শৌলের ছল চাতুরি| আসলে তিনি ভেবেছিলেন, “আমাকে আর দায়ূদকে মারতে হবে না| পলেষ্টীয়দেরই এগিয়ে দেব আমার হয়ে ওকে মারবার জন্য|” 18 দায়ূদ বললেন, “আমি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ পরিবার থেকে আসি নি| আমি কোন গণ্যমান্য ব্যক্তি নই| আমি রাজকন্যাকে বিয়ে করার য়োগ্য নই|” 19 তাই দাযূদের সঙ্গে শৌলের কন্যা মেরবের বিয়ের সময় হলে শৌল মহোলা দেশের অদ্রীযেলের সঙ্গে তার বিয়ে দিলেন| 20 শৌলের আরেকটি কন্যা মীখল দায়ূদকে ভালবাসত| লোকরা শৌলকে জানাল, মীখল দায়ূদকে ভালবাসে| শৌল শুনে খুশী হলেন| 21 শৌল চিন্তা করলেন, “আমি এবার মীখলকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করব| আমি দাযূদের সঙ্গে ওর বিয়ে দেব| তারপর পলেষ্টীয়রা ওকে মেরে ফেলবে|” এই ভেবে তিনি দায়ূদকে দ্বিতীয় বার বললেন, “আমার কন্যাকে তুমি আজই বিয়ে করো|” 22 শৌল তাঁর পদস্থ কর্মচারীদের আদেশ দিলেন, “দাযূদের সঙ্গে আলাদা করে গোপনভাবে কথা বলবে| তাকে বলবে, ‘রাজার তোমাকে খুব পছন্দ হয়েছে| তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মচারীরাও তোমাকে পছন্দ করে| রাজার কন্যাকে তুমি বিয়ে করো|”‘ 23 আধিকারিকরা দায়ূদকে সেইমত সব কিছু বলল| দায়ূদ বললেন, “তুমি কি মনে কর রাজার জামাতা হওয়া সোজা কথা? রাজকন্যার উপযুক্ত টাকাপয়সা খরচ করার সাধ্য আমার নেই| আমি নেহাত একজন সামান্য গরীব ছেলে|” 24 তারা শৌলকে দাযূদের উত্তর জানাল| 25 শৌল তাদের বললেন, “তোমরা দায়ূদকে বলবে, ‘দায়ূদ, রাজকন্যার বিয়েতে কোন টাকপয়সা নেবেন না| শৌল তাঁর শত্রুদের শাযেস্তা করতে চান| তাই কনের দাম হবে 100 পলেষ্টীয়ের লিঙ্গত্বক,”‘ এটাই ছিল শৌলের গোপন মতলব| সে ভেবেছিল এর ফলে পলেষ্টীয়রা তাকে হত্যা করবে| 26 শৌলের আধিকারিকরা দায়ূদকে এ সম্বন্ধে জানাল| দায়ূদ রাজার জামাতা হবার সুয়োগ পেয়ে খুশী হলেন| সেই জন্যেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে কিছু করতে চাইলেন| 27 দায়ূদ তাঁর লোকদের নিয়ে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলেন| তিনি 200 জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করলেন| আর তাদের লিঙ্গত্বক শৌলকে উপহার দিলেন| তাঁকে রাজার জামাতা হবার জন্য, এই মূল্য দিতে হল|শৌলের কন্যা মীখলের সঙ্গে দাযূদের বিয়ে হয়ে গেল| 28 শৌল বুঝতে পারলেন, প্রভু দাযূদের সহায়| তিনি বুঝতে পারলেন মীখল দায়ূদকে ভালবাসে| 29 তাই শৌল দায়ূদকে আরও বেশী ভয় পেয়ে গেলেন এবং সারাজীবন তাঁর শত্রু হিসেবে রযে গেলেন| 30 পলেষ্টীয় সেনাপতিরা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতেই থাকল| কিন্তু প্রতিবারই দায়ূদ তাদের যুদ্ধে হারিয়ে দিলেন| এই ভাবে তিনি শৌলের সবচেয়ে সেরা অধিকর্তা হয়ে উঠলেন| দায়ূদ বেশ বিখ্যাত হয়ে গেলেন|
1 শৌল তাঁর পুত্র য়োনাথনকে এবং আধিকারিকদের দায়ূদকে হত্যা করবার আদেশ দিলেন| কিন্তু য়োনাথন দায়ূদকে ভালবাসত| 2 য়োনাথন দায়ূদকে সাবধান করে বলল, “সাবধান! শৌল তোমাকে মারবার সুয়োগ খুঁজছে| সকাল বেলা মাঠে গিয়ে লুকিয়ে থেকো| আমি পিতাকে নিয়ে সেই মাঠে আসব এবং তুমি যেখানে লুকিয়ে থাকবে তার কাছে গিয়ে দাঁড়াব| আমি তোমার ব্যাপারে পিতার সঙ্গে কথা বলব| তারপর আমি কি জানলাম তা তোমাকে জানাব|” 3 4 পিতার সঙ্গে য়োনাথন কথা বলতে লাগল| সে দাযূদের গুণগান করল| সে পিতাকে বলল, “তুমি হচ্ছ রাজা| দায়ূদ তোমার দাস| সে তোমার কোন ক্ষতি করে নি, সুতরাং তার প্রতি তুমি অন্যায় ব্যবহার করো না| সে তো সর্বদা তোমার ভালই করেছে| 5 পলেষ্টীয়কে হত্যা করতে গিয়ে সে তার জীবন বিপন্ন করেছিল| আর প্রভু ইস্রায়েলীয়দের জন্য মহাবিজয় এনেছিলেন| তুমি স্বচক্ষে এসব দেখেছিলে, তুমি খুশিও হয়েছিলে| তাহলে কেন তুমি দায়ূদকে মারতে চাও? সে নির্দোষ| তাকে মেরে ফেলার কোন কারণই দেখছি না|” 6 শৌল য়োনাথনের কথা শুনলেন| শুনে তিনি প্রতিজ্ঞা করে বললেন, “যেমন প্রভুর অস্তিত্ব নিশ্চিত তেমনই নিশ্চিত হও যে দায়ূদকে হত্যা করা হবে না|” 7 য়োনাথন দায়ূদকে ডেকে সব বলল| সে দায়ূদকে শৌলের কাছে ডেকে আনল| তাই দায়ূদ আগের মতই শৌলের কাছে থেকে গেলেন| 8 আবার যুদ্ধ শুরু হল| দায়ূদ পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়তে গেলেন| তিনি তাদের হারিয়ে দিলেন| তারা পালিয়ে গেল| 9 কিন্তু প্রভুর কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা শৌলের উপর এল| তিনি ঘরে বসেছিলেন| তাঁর হাতে ছিল বল্লম| দায়ূদ বীণা বাজাচ্ছিলেন| 10 শৌল বল্লম ছুঁড়ে দায়ূদকে দেওয়ালে গেঁথে দিতে গেলেন, কিন্তু দায়ূদ লাফ দিয়ে সরে গেলেন| বল্লম ফসকে গিয়ে দেওয়ালে বিঁধে গেল| সেই রাত্রে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন| 11 দাযূদের বাড়িতে শৌল লোক পাঠালেন| তারা সারারাত দাযূদের বাড়ির কাছাকাছি পাহারা দিল| তারা সকালে দায়ূদকে হত্যা করবে বলে অপেক্ষা করছিল| কিন্তু দাযূদের স্ত্রী মীখল দায়ূদকে সাবধান করে দিয়েছিল| সে বলল, “আজ রাত্রেই তুমি পালিয়ে গিয়ে নিজেকে বাঁচাও না হলে ওরা কালই তোমাকে মেরে ফেলবে|” 12 মীখল দায়ূদকে জানালা দিয়ে নীচে নামতে সাহায্য করল| দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পেলেন| 13 মীখল গৃহদেবতাকে নিয়ে তাকে কাপড় পরাল| তারপর বিছানার ওপর মূর্ত্তিটাকে রাখল| মূর্ত্তির মাথায় কিছু ছাগলের চুলও ছড়িয়ে দিল| 14 শৌল দায়ূদকে ধরে আনার জন্য লোক পাঠালেন| কিন্তু মীখল বলল, “দাযূদের অসুখ করেছে|” 15 লোকরা শৌলকে একথা বলতে শৌল আবার তাদের দায়ূদকে আনার জন্য পাঠালেন| শৌল তাদের বলে দিলেন, “দায়ূদকে শুয়ে থাকা অবস্থাতেই নিয়ে আসবে| আমি তাকে হত্যা করব|” 16 আবার তারা দাযূদের বাড়ি গেল| বাড়ির ভেতর ঢুকে ঘরে গিয়ে দেখল বিছানার ওপর দেবতার মূর্ত্তি, মূর্ত্তির মাথায় ছাগলের চুল| 17 শৌল মীখলকে বললেন, “তুমি কেন আমার সঙ্গে এইভাবে চালাকি করলে? কেন তুমি আমার শত্রুকে পালাতে দিলে? দায়ূদ তো পালিয়ে গেছে!”মীখল বলল, “দায়ূদ বলেছিলেন, আমি যদি ওকে পালাতে সাহায্য না করি তাহলে তিনি আমাকে হত্যা করবেন|” 18 দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে রামায় শমূযেলের কাছে এলেন| শৌল তাঁর প্রতি কি করেছেন সে সব দায়ূদ শমূয়েলকে বললেন| তারপর তারা দুজন তাঁবুগুলোর দিকে গেলেন| সেখানে ভাববাদীরা থাকত| সেখানেই দায়ূদ থেকে গেলেন| 19 শৌল জেনেছিলেন দায়ূদ রামার কাছাকাছি তাঁবুগুলোর মধ্যেই আছেন| 20 শৌল দায়ূদকে বন্দী করে আনার জন্য লোক পাঠালেন| কিন্তু তারা যখন সেখানে এলো, তখন একদল ভাববাদী ভাববাণী করছিল| তাদের নেতা শমূয়েল সেখানে দাঁড়িয়ে| শৌলের লোকদের ওপরও ঈশ্বরের আত্মা এলেন, তাই তারাও ভাববাণী করতে শুরু করল| 21 শৌলের কানে এ খবর পৌঁছল| তিনি তখন অন্য একদল লোক পাঠালেন| তারাও সেখানে গিয়ে ভাববাণী করতে শুরু করল| তারপর শৌল তৃতীয় একদল প্রতিনিধি পাঠালেন| তারাও ভাববাণী করতে শুরু করল| 22 অবশেষে শৌল নিজেই রামায় গেলেন| যেখানে ফসল ঝাড়াই হয় তার পাশে একটি বড় কুযোর দিকে শৌল চলে এলেন| কুযোটা ছিল সেখু নামের একটা জায়গায়| শৌল সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “শমূয়েল আর দায়ূদ কোথায়?”লোকরা বলল, “তারা রামার কাছে তাঁবুগুলোতে রযেছে|” 23 শৌল তখন রামার কাছে তাঁবুগুলোর দিকে গেলেন| এবার শৌলের উপরও ঈশ্বরের আত্মা নেমে এলো| শৌল ভাববাণী করতে শুরু করলেন| রামার তাঁবুগুলোর দিকে রাস্তায় যতই এগোলেন ততই তিনি আরো বেশী করে ভাববাণী করতে লাগলেন| 24 তারপর শৌল তাঁর পোশাক খুলে ফেললেন এবং শমূযেলের সামনেই ভাববাণী করতে লাগলেন| সমস্ত দিন সমস্ত রাত তিনি নগ্ন হয়ে পড়ে রইলেন|সেই জন্য লোকে বলে, “শৌল কি তবে ভাববাদীদের মধ্যে একজন?”
1 রামার তাঁবুগুলো থেকে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন| য়োনথনের কাছে গিয়ে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি অন্যায় করেছি? কি আমার অপরাধ? কেন তোমার পিতা আমায় হত্যা করতে চাইছে?” 2 য়োনাথন বলল, “এ হতেই পারে না| আমার পিতা তোমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে না| আমাকে কিছু না বলে সে কোন কাজই করে না| সে কাজ যতই সামান্য হোক, কি জরুরীই হোক, আমাকে সে সবই বলে| তাহলে তোমাকে মারার কথাই বা আমাকে সে বলবে না কেন? না, তোমার কথা ঠিক নয়|” 3 কিন্তু দায়ূদ বললেন, “তোমার পিতা ভালভাবেই জানে যে আমি তোমার বন্ধু| তোমার পিতা মনে মনে ভেবেছে, য়োনাথন যেন আমার মতলব জানতে না পারে| যদি সে এর সম্পর্কে জানতে পারে, তার হৃদয় দুঃখে ভরে যাবে এবং সে দায়ূদকে জানিয়ে দেবে| কিন্তু তুমি এবং প্রভু যেমন নিশ্চিতভাবে জীবিত সেই রকম নিশ্চিতভাবেই আমার মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে|” 4 য়োনাথন বলল, “তুমি যা বলবে আমি তাই করব|” 5 দায়ূদ বললেন, “শোন, কাল অমাবস্যার উত্সব| আমার রাজার সঙ্গে খাবার কথা আছে| কিন্তু সন্ধ্য়ে অবধি আমায় মাঠে লুকিয়ে থাকতে হবে| 6 যদি তোমার পিতার চোখে পড়ে যে আমি নেই তবে তাঁকে বোলো, ‘দায়ূদ বৈত্লেহমে বাড়িতে যেতে চাইছিল, কারণ এই উপলক্ষ্যে ওর বাড়িতে খাওয়া দাওযা আছে| সে আমার কাছে বৈত্লেহমে তার পরিবারের কাছে যাবার অনুমতি চেয়েছিল|’ 7 যদি তোমার পিতা বলেন, ‘ভালই তো’ তবেই বুঝব আমার বিপদ কেটে গেছে| আর যদি রেগে যান তাহলে জেনে রেখো তিনি আমায় মারবেনই| 8 য়োনাথন আমায় দয়া করো| আমি তোমার ভৃত্য| প্রভুর সামনে তুমি আমার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলে| যদি আমি দোষী হই, তুমি তোমার নিজের হাতে আমাকে হত্যা কোরো, কিন্তু তোমার পিতার কাছে আমাকে নিয়ে যেও না|” 9 য়োনাথন বলল, “না না, এ হতেই পারে না| যদি পিতার তোমাকে মারার মতলব আমি জানতে পারি তাহলে তোমায় সাবধান করে দেব|” 10 দায়ূদ বললেন, “তোমার পিতা যদি তোমাকে কর্কশভাবে উত্তর দেন তাহলে কে আমায় সাবধান করবে?” 11 য়োনাথন বলল, “চলো, মাঠে যাওয়া যাক|” য়োনাথন আর দায়ূদ মাঠে গেল| 12 য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভুর সামনে আমি দিব্য দিয়ে বলছি, পিতা তোমাকে নিয়ে কি ভাবেন সব আমি জেনে নেব; তোমার ভাল চাইলেও জানতে পারব, মন্দ চাইলেও জানতে পারব| তারপর তিন দিনের মধ্যে তোমার কাছে মাঠে খবর পাঠাব| 13 পিতা তোমাকে মারতে চাইলে তোমায জানাব| তুমি তখন বিনা বাধায পালাতে পারবে| আমার কথা রাখতে না পারলে প্রভু আমায় শাস্তি দেবেন| প্রভু তোমার সহায় হোন, যেমন তিনি আমার পিতার সহায়| 14 যতদিন বেঁচে থাকবে আমার প্রতি দয়াশীল থেকো| 15 আমার মৃত্যুর পর আমার পরিবারকে তোমার দয়া দেখাতে ভুলো না| প্রভু তোমার সমস্ত শত্রুকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করবেন| 16 তখন য়োনাথন দাযূদের পরিবারের সঙ্গে এই মর্মে এক চুক্তি করল: দাযূদের শত্রুদের প্রভু যেন শাস্তি দেন|” 17 এই বলে য়োনাথন দাযূদের কাছ থেকে আবার শুনতে চাইল ভালবাসার সেই অঙ্গীকার| য়োনাথন দায়ূদকে ভালবাসে, যেমন সে নিজেকে ভালবাসে| 18 য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “কাল অমাবস্যার উত্সব| তোমার আসন ফাঁকা থাকবে| তাহলেই আমার পিতা বুঝবে যে তুমি চলে গেছ| 19 তৃতীয় দিনে ঐ একই জায়গায় তুমি লুকিয়ে থাকবে| সেদিন ঝামেলা হতে পারে| পাহাড়ের ধারে অপেক্ষা করবে| 20 ঐ দিন আমি পাহাড়ে উঠবো| দেখাব যে আমি তীর ছুঁড়ে লক্ষ্যভেদ করছি| আমি কযেকটি তীর ছুঁড়বো| 21 তারপর ঠিক্ঠাক্ চললে আমি ওকে বলব, ‘তুই বহু দূরে চলে গেছিস, তীরগুলো তো আমার অনেক কাছেই রযেছে| যা আবার ফিরে এসে ওগুলো নিয়ে আয|’ যদি তা বলি তবে তুমি আর লুকিয়ে থেকো না| প্রভুর দিব্য সেক্ষেত্রে তোমার কোন বিপদ হবে না| 22 কিন্তু বিপদ যদি থাকে তাহলে ছেলেটিকে বলবো, ‘তীরগুলো আরো দূরে পড়ে আছে| যা ওগুলো নিয়ে আয|’ তখন তুমি অবশ্যই চলে যাবে| কারণ প্রভুই তোমাকে দূরে পাঠাচ্ছেন| 23 তোমার ও আমার মধ্যে এই চুক্তি হল, তা মনে রেখো| প্রভু চিরজীবন আমাদের মধ্যে সাক্ষী রইলেন|” 24 দায়ূদ মাঠে লুকিয়ে পড়লেন|অমাবস্যার উত্সবের দিন এলে রাজা খেতে বসলেন| 25 দেওয়ালের পাশেই সচরাচর যে আসনেতে বসতেন রাজা সেই আসনেই বসলেন| য়োনাথন শৌলের মুখোমুখি বসেছিল| শৌলের পাশে বসেছিল অব্নের| কিন্তু দাযূদের জায়গাটা খালি ছিল| 26 সেদিন শৌল কিছুই বললেন না| ভাবলেন, “নিশ্চয়ই দাযূদের কিছু হয়েছে| তাই সে শুচি হতে পারে নি|” 27 পরদিন মাসের দোসরা| সেদিনও আবার দাযূদের জায়গা খালি রইল| শৌল তাঁর পুত্র য়োনাথনকে বললেন, “য়িশযের পুত্রকে কাল দেখি নি, আজও দেখছি না কেন? অমাবস্যার উত্সবে সে আসছে না কেন?” 28 য়োনাথন বলল, “দায়ূদ আমাকে বলেছিল ও বৈত্লেহমে যাবে| 29 সে বলেছিল, ‘আমি যাব, তুমি অনুমতি দাও| বৈত্লেহেমে আমার বাড়ির সকলে য়জ্ঞে বলি দেবে| আমার ভাই যেতে বলেছে| আমি যদি তোমার বন্ধু হই তাহলে আমাকে তুমি যেতে দাও, ভাইদের সঙ্গে দেখা হবে|’ তাই ও রাজার টেবিলে খেতে আসে নি|” 30 শৌল য়োনাথনের উপর খুব রেগে গেলেন| তিনি তাকে বললেন, “নির্বোধ, হতভাগা ক্রীতদাসীর পুত্র| আমি জানি তুমি দাযূদের পক্ষে| তুমি, তোমার নিজের কলঙ্ক, তোমার মাযেরও কলঙ্ক| 31 যতদিন য়িশযের পুত্র বেঁচে থাকবে, ততদিন তুমি না হবে রাজা, না পাবে রাজ্য| যাও, এক্ষুনি দায়ূদকে ধরে নিয়ে এসো কারণ সে মৃত্যুর সন্তান|” 32 য়োনাথন বলল, “কেন দায়ূদকে মারতে হবে? সে কি করেছে?” 33 এই কথা শুনে শৌল য়োনাথনের দিকে বল্লমটা ছুঁড়ে মারলেন| উদ্দেশ্য তাকেই মেরে ফেলা| এই থেকে য়োনাথন বুঝতে পারল, তার পিতা দায়ূদকে সত্যি মেরে ফেলতে চান| 34 য়োনাথন রেগে গেল| সে টেবিল ছেড়ে উঠে পড়ল| পিতার ব্যাপারে সে এত মুষড়ে পড়ল আর এত রেগে গেল যে দ্বিতীয় দিনের ভোজ সভায সে কিছু খেল না| তার রাগের কারণ, পিতা তাকে অপমান করেছিল এবং দায়ূদকে হত্যা করতে চায| 35 পরদিন সকালে দাযূদের সঙ্গে যেমন ব্যবস্থা হয়েছিল সেভাবে য়োনাথন মাঠে গেল| য়োনাথন, একটা বালককে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল| 36 সে বালকটিকে বলল, “যা, যে তীরগুলো আমি ছুঁড়ছি সেগুলো কুড়িযে নিয়ে আয|” বালকটি ছুটতে লাগল, আর য়োনাথন তার মাথার উপর দিয়ে তীর ছুঁড়ল| 37 তীরগুলো যেখানে পড়েছে সে দিকে বালকটি ছুটে গেল| কিন্তু য়োনাথন বলল, “তীর তো আরও দূরে|” 38 য়োনাথন চেঁচিয়ে বলল, “তাড়াতাড়ি কর| তীরগুলো নিয়ে আয| ওখানে দাঁড়িয়ে থাকিস না|” বালকটি তীরগুলো কুড়িযে মনিবের কাছে এনে দিল| 39 কি হচ্ছে তার সে কিছুই বুঝল না| জানত শুধু য়োনাথন আর দায়ূদ| 40 য়োনাথন তীরধনুক বালকটির হাতে দিল| তারপর ওকে বলল, “যা! শহরে ফিরে যা|” 41 বালকটি চলে গেলে দায়ূদ পাহাড়ের ওপাশে লুকোনো জায়গা থেকে বেরিয়ে এলো| য়োনাথনের কাছে এসে দায়ূদ মাটিতে মাথা নোযালেন| এরকম তিনবার তিনি মাথা নোযালেন| তারপর দুজন দুজনকে চুম্বন করল| দুজনেই খুব কান্নাকাটি করল| তবে দায়ূদই কাঁদলেন বেশী| 42 য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “যাও শান্তিতে যাও| প্রভুর নাম নিয়ে আমরা বন্ধু হয়েছিলাম| বলেছিলাম, তিনিই হবেন আমাদের দুজন ও পরবর্তী উত্তরপুরুষদের মধ্যে বন্ধুদের চিরকালের সাক্ষী|”
1 দায়ূদ চলে গেলেন| য়োনাথন শহরে ফিরে এলো| 2 দায়ূদ নোব শহরে যাজক অহীমেলকের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন|অহীমেলক দাযূদের সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়ে এলেন| তিনি তো ভয়ে কাঁপছিলেন| তিনি দায়ূদকে জিজ্ঞেস করলেন, “কি ব্যাপার, তুমি একা কেন? তোমার সঙ্গে কাউকে দেখছি না কেন?” 3 দায়ূদ বললেন, “রাজা আমাকে একটি বিশেষ আদেশ দিয়েছেন| তিনি আমাকে বলেছেন, ‘এই আসার উদ্দেশ্য নিয়ে তুমি কাউকে কিছু জানাবে না| আমি তোমাকে কি বলছি কেউ যেন জানতে না পারে|’ আমার লোকদের বলছি কোথায় ওরা আমার সঙ্গে দেখা করবে| 4 এখন বলো, তোমার সঙ্গে কি খাবার আছে? তোমার কাছে থাকলে পাঁচটি গোটা রুটি আমাকে দাও, না হলে অন্য কিছু খেতে দাও|” 5 যাজক বললেন, “আমার কাছে তো সাধারণ কোন রুটি নেই, কিন্তু পবিত্র রুটি আছে| তোমার লোকরা তা খেতে পারে, অবশ্য যদি কোন নারীর সঙ্গে তাদের য়ৌন সম্পর্ক না থেকে থাকে|” 6 দায়ূদ যাজককে বললেন, “না, এরকম কোন ব্যাপার নেই|” যুদ্ধে যাবার সময় এবং সাধারণ কাজের সময়ও তারা তাদের দেহগুলিকে শুদ্ধ রাখে| তাছাড়া এখন আমরা একটি বিশেষ কাজে এসেছি, সুতরাং অশুদ্ধ থাকার প্রশ্নই ওঠে না|” 7 পবিত্র রুটি ছাড়া সেখানে অন্য কোন রুটি ছিল না| যাজক দায়ূদকে তা-ই দিলেন| এই রুটিই তারা প্রভুর সামনে পবিত্র টেবিলে রেখে দিত| প্রতিদিন তারা এগুলো বদলে টাটকা রুটি রেখে দিত| 8 সেদিন সেখানে শৌলের একজন অনুচর উপস্থিত ছিল| সে ছিল ইদোম বংশীয়, তার নাম দোযেগ| সে ছিল শৌলের প্রধান মেষপালক| দোযেগকে সেখানে প্রভুর সামনে রাখা হয়েছিল| 9 দায়ূদ অহীমেলককে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কাছে কি বল্লম বা তরবারি কিছু একটা আছে| রাজার কাজটা জরুরি তাই তাড়াতাড়িতে আমি সঙ্গে কোনো তরবারি বা অস্ত্রশস্ত্র আনি নি|” 10 যাজক বললেন, “এখানে তো মাত্র একটাই তরবারি আছে, সেটা পলেষ্টীয় গলিযাতের তরবারি| তুমি এলা উপত্যকায তাকে হত্যা করার সময় ওর হাত থেকেই এটা কেড়ে নিয়েছিলে| ওটা কাপড়ে মুড়ে এফোদের পেছনে রাখা আছে| ইচ্ছা হলে এটা তুমি নিয়ে যেতে পারো|”দায়ূদ বললেন, “ওটাই তুমি আমাকে দাও| গলিযাতের তরবারির মতো তরবারি আর কোথাও পাওয়া যাবে না|” 11 সেদিন শৌলের কাছ থেকে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন| তিনি গাতের রাজা আখীশের কাছে গেলেন| 12 আখীশের অনুচররা এটা ভাল মনে করলো না| তারা বলল, “ইনি হচ্ছেন দায়ূদ, ইস্রায়েলের রাজা| এঁকে নিয়েই ওদের লোকেরা গান গায| ওরা নেচে নেচে এই গানটা করে: “দায়ূদ মেরেছে শত্রু অয়ুতে অয়ুতে শৌল তো কেবল হাজারে হাজারে|” 13 তাদের কথাগুলো দায়ূদ বেশ মন দিয়ে শুনলেন| গাতের রাজা আখীশকে তিনি ভয় করতে লাগলেন| 14 শেষে আখীশ ও তার অনুচরদের সামনে দায়ূদ পাগলের ভান করলেন| ওদের কাছে তিনি ইচ্ছে করে পাগলামি করতে লাগলেন| তিনি দরজায থুতু ছিটাতে লাগলেন| তাঁর দাড়ি দিয়ে থুতু গড়াতে দিলেন| 15 আখীশ তার অনুচরদের বলল, “আরে লোকটাকে দেখো, সত্যি মাথা খারাপ| একে আমার কাছে এনেছ কেন? 16 আমার আশপাশে য়থেষ্ট পাগল রযেছে| আমার কাছে ঐ জাতীয লোক আর বেশী আনার দরকার নেই| এটাকে আবার আমার বাড়িতে ঢুকিও না|
1 দায়ূদ গাত্ থেকে চলে গেলেন| তিনি পালিয়ে অদুল্লমের গুহায় গেলেন| দাযূদের ভাই আর আত্মীযস্বজনরা এই সংবাদ জানতে পারল| তারা সেখানে দাযূদের সঙ্গে দেখা করতে গেল| 2 অনেক লোক দাযূদের সঙ্গে যুক্ত হল| তাদের মধ্যে কেউ কেউ কোন বিপদে পড়েছিল, কেউ অনেক টাকা ধার করেছিল, আবার কেউ জীবনে সুখ শান্তি পাচ্ছিল না| এরা সকলেই দাযূদের সঙ্গে য়োগ দিল| দায়ূদ হলেন তাদের নেতা| তাঁর সঙ্গে ছিল এরকম 400 জন পুরুষ| 3 অদুল্লম থেকে দায়ূদ গেলেন মিস্পাতে| মিস্পা মোয়াবের একটা জায়গা| মোয়াবের রাজাকে দায়ূদ বললেন, “যতদিন না আমি জানতে পারছি ঈশ্বর আমার জন্য কি করবেন, ততদিন দয়া করে আপনি আমার পিতা-মাতাকে আপনার কাছে থাকতে দিন|” 4 তারপর দায়ূদ মোয়াবের রাজার কাছে তাঁর পিতামাতাকে রেখে চলে গেলেন| যতদিন দায়ূদ দুর্গে থেকেছিলেন ততদিন তাঁর পিতামাতা মোয়াবের রাজার কাছে রইলেন| 5 কিন্তু ভাববাদী গাদ দায়ূদকে বললেন, “দুর্গে থেকো না| যিহূদা দেশে চলে যাও|” দায়ূদ সেইমত দুর্গ ছেড়ে হেরত্ অরণ্যে চলে গেলেন| 6 শৌল শুনতে পেলেন যে দায়ূদ আর তাঁর সঙ্গীদের সম্বন্ধে লোকরা খবর পেয়েছে| গিবিয়ার পাহাড়ে একটা গাছের নীচে শৌল বল্লম হাতে নিয়ে বসেছিলেন| তাঁর চারপাশে অনুচররা তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল| 7 শৌল তাদের বললেন, “বিন্যামীনের লোকরা শোন, তোমরা কি মনে করো য়িশযের পুত্র (দায়ূদ) তোমাদের ক্ষেত এবং দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি দেবে? তোমরা কি মনে করো দায়ূদ তোমাদের চাকরির উন্নতি করে দেবে এবং 1,000 লোকের উপর বা 100 লোকের উপরে তোমাদের নিযুক্ত করবে?” 8 তোমরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছো| তোমরা চুপিচুপি আমার বিরুদ্ধে গোপনে মতলব আঁটছ| তোমাদের মধ্যে একজনও আমাকে বলনি যে আমার পুত্র য়োনাথন দায়ূদকে উত্সাহিত করেছে| তোমরা কেউ আমাকে গ্রাহ্য করো না| তোমরা কেউ বলনি আমার পুত্র য়োনাথন দায়ূদকে উত্সাহ দিয়েছে| য়োনাথন আমার ভৃত্য দায়ূদকে গা ঢাকা দিতে বলেছিল, যাতে সে আমাকে আক্রমণ করতে পারে| আর দায়ূদ এখন ঠিক এটাই করে যাচ্ছে|” 9 ইদোম পরিবারের দোযেগ সেখানে শৌলের আধিকারিকদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিল| দোযেগ বললেন, “আমি য়িশযের পুত্রকে নোবে দেখেছিলাম| সে অহীটুবের পুত্র অহীমেলকের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল| 10 অহীমেলক দাযূদের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিল| সে দায়ূদকে খাবারও দিয়েছিল| তাছাড়া পলেষ্টীয় গলিযাতের তরবারিও দিয়েছিল|” 11 অতঃপর রাজা শৌল যাজককে ডেকে আনতে কযেকজনকে পাঠালেন| তিনি অহীটুবের পুত্র অহীমেলক এবং তার সকল আত্মীযদের ডেকে পাঠালেন| তাঁরা সকলেই নোবের যাজক ছিলেন| তাঁরা সকলেই রাজা শৌলের কাছে এলেন| 12 শৌল অহীমেলককে বললেন, “শোনো অহীটুবের পুত্র|”অহীমেলক বললেন, “বলুন|” 13 শৌল বললেন, “কেন তুমি আর য়িশযের পুত্র আমার বিরুদ্ধে গোপনে চক্রান্ত করছ? তুমি দায়ূদকে রুটি দিয়েছিলে| শুধু তাম্প নয়, একা তরবারিও দিয়েছিলে| তুমি তার হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলে| আর এখন দায়ূদ আমাকে আক্রমণ করার জন্যে সময় গুনছে!” 14 অহীমেলক বললেন, “দায়ূদ আপনার খুবই অনুগত| আপনার কোনো অনুচরই দাযূদের মতো প্রভু ভক্ত নয়, সে আপনার জামাতা| আপনার রক্ষীদের দলপতি| আপনাদের বাড়ীর সকলেই দায়ূদকে সম্মান করে| 15 দাযূদের জন্যে আমি ঈশ্বরের কাছে এই প্রথমবারই যে প্রার্থনা করেছি তা নয়| এর জন্যে, আমায় অথবা আমার কোন আত্মীযকে আপনি দোষী করবেন না| আমরা আপনার ভৃত্য| কি হচ্ছে আমি তার কিছুই জানি না|” 16 তবু রাজা বললেন, “অহীমেলক, তুমি আর তোমার আত্মীযস্বজন সকলকেই মরতে হবে|” 17 রাজা প্রহরীদের কাছে ডেকে বললেন, “যাও প্রভুর সমস্ত যাজকদের হত্যা করে এসো| তাদের হত্যা করো, কারণ তারা দাযূদের দলে| তারা জানত দায়ূদ পালিয়ে যাচ্ছে, তবুও তারা আমাকে কিছু বলেনি|”কিন্তু কেউই প্রভুর যাজকদের আঘাত করতে রাজি হল না| 18 তখন রাজা দোযেগকে আদেশ দিলেন| শৌল বললেন, “দোযেগ, তুমি যাজকদের হত্যা করো|” দোযেগ গিয়ে যাজকদের হত্যা করলো| সেই দিন সে 85 জন যাজককে হত্যা করল| 19 নোব ছিল যাজকদের শহর| শহরের সকলকেই দোযেগ হত্যা করল| পুরুষ, নারী, শিশু সকলকেই সে তরবারির কোপে শেষ করে দিল| সেই সঙ্গে মেরে ফেলল তাদের গরু, গাধা আর মেষগুলোকেও| 20 শুধু বেঁচে গেলেন অবিয়াথর| তার পিতা অহীমেলক| অহীমেলকের পিতা অহীটুব| অবিয়াথর পালিয়ে গিয়ে দাযূদের সঙ্গে য়োগ দিলেন| 21 তিনি দায়ূদকে বললেন শৌল সমস্ত যাজকদের হত্যা করেছে| 22 দায়ূদ বললেন, “আমি সেদিন নোবে ইদোমীয় দোযেগকে দেখেছিলাম| আমি জানতাম শৌলকে সে সব বলবে| তোমার পিতার পরিবারের সকলের মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী|” 23 যে লোকটা তোমাকে হত্যা করতে চায, সে আমাকেও হত্যা করতে চায| আমার সঙ্গে থাকো, ভয় পেও না| তুমি নিরাপদেই থাকবে|”
1 লোকরা দায়ূদকে বলল, “দেখুন, পলেষ্টীয়রা কিযীলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে| তারা ফসল ঝাড়াইযের জায়গা থেকে সব ফসল লুঠপাট করে নিচ্ছে|” 2 দায়ূদ প্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই করব?”প্রভু উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, কিযীলাকে বাঁচাও| পলেষ্টীয়দের আক্রমণ কর|” 3 এদিকে দাযূদের লোকরা দায়ূদকে বলল, “শুনুন, আমরা যিহূদায় থাকতেই বেশ ভয় পাচ্ছি| তাহলে চিন্তা করুন পলেষ্টীয় সৈন্যদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইতে আমরা আরও কতখানি ভয় পেতে পারি|” 4 দায়ূদ আবার প্রভুকে জিজ্ঞেস করলো| প্রভু বললেন, “কিযীলায চলে যাও| আমি তোমাকে পলেষ্টীয়দের হারাতে সাহায্য করব|” 5 তাই সঙ্গীদের নিয়ে দায়ূদ কিযীলায গেলেন| তাঁর সঙ্গীরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করল| যুদ্ধে তারা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে তাদের গরু, মোষ সব দখল করে নিল| এভাবেই দায়ূদ কিযীলার লোকদের বাঁচালেন| 6 (যখন অবিয়াথর দাযূদের কাছে গিয়েছিলেন, তখন তিনি তাঁর সঙ্গে একটা এফোদ নিয়েছিলেন|) 7 লোকরা শৌলকে বলল, “দায়ূদ এখন কিযীলায আছে|” শৌল বললেন, “ঈশ্বর দায়ূদকে আমার হাতেই দিয়েছেন| দায়ূদ নিজের জালেই নিজেকে জড়িয়েছে| সে এমন একটা শহরে গেল যেখানে অনেক ফটক এবং ফটক বন্ধ করার অনেক খিল আছে|” 8 শৌল তাঁর সব সৈন্যদের যুদ্ধ করার জন্য ডাকলেন| তারা দায়ূদ ও তাঁর লোকদের আক্রমণ করার জন্য কিযীলায যাবার জন্য প্রস্তুত হলো| 9 শৌলের এই মতলব দায়ূদ জানতে পারলেন| তিনি যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এই খানে সেই এফোদ আনো|” 10 দায়ূদ প্রার্থনা করলো, “হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি শুনেছি শৌল আমার জন্য কিযীলায এসে শহর ধ্বংস করার মতলব করেছে| 11 শৌল কি কিযীলায আসবে? কিযীলায লোকরা কি ওর হাতে আমায় তুলে দেবে? হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি আপনার সেবক| দয়া করে আমায় বলুন!”প্রভু বললেন, “শৌল আসবে|” 12 আবার দায়ূদ জিজ্ঞেস করলো, “কিযীলার লোকরা কি আমায় এবং আমার লোকদের শৌলের হাতে ধরিয়ে দেবে?”প্রভু বললেন, “হ্যাঁ, ধরিয়ে দেবে|” 13 তখন দায়ূদ সঙ্গীদের নিয়ে কিযীলা ছেড়ে চলে গেলেন| দাযূদের সঙ্গে ছিল 600 জন পুরুষ| তারা বিভিন্ন জায়গায় চলে গেল| শৌল জানতে পারলেন দায়ূদ কিযীলা থেকে চলে গেছেন| তাই তিনি আর ওখানে গেলেন না| 14 দায়ূদ মরুভূমিতে গিয়ে সেখানকার উঁচু পাঁচিল ঘেরা দুর্গ নগরে কিছুকাল থেকে গেলেন| তিনি সীফ মরুভূমির পাহাড়ি দেশেও থাকলেন| প্রতিদিন শৌল দায়ূদদের খোঁজ করতেন; কিন্তু প্রভু শৌলের হাতে দায়ূদকে সঁপে দিলেন না| 15 সীফ মরুভূমির হোরেশে দায়ূদ গেলেন| শৌল তাকে হত্যা করতে আসছেন বলে তিনি বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন| 16 কিন্তু শৌলের পুত্র য়োনাথন হোরেশে দাযূদের সঙ্গে দেখা করতে গেল| য়োনাথন দায়ূদকে ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখতে সাহায্য করেছিলো| 17 য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “ভয় পেও না| আমার পিতা শৌল তোমাকে মারবে না| তুমি হবে ইস্রায়েলের রাজা| আমি হব তোমার দ্বিতীয় জন| এমনকি আমার পিতাও সেটা জানে|” 18 য়োনাথন এবং দায়ূদ দুজনে প্রভুর সামনে এক চুক্তি করলো| তারপর য়োনাথন ঘরে ফিরে গেলো| দায়ূদ হোরেশে থেকে গেলেন| 19 সীফের বাসিন্দারা শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গিবাযায় এল| তারা শৌলকে বলল, “দায়ূদ আমাদের দেশেই লুকিয়ে আছে| দায়ূদ যেশিমোনের দক্ষিণে হখীলা পাহাড়ের ওপর হোরেশের দুর্গে রযেছেন| 20 সুতরাং হে রাজন, যে কোন দিন আপনি আমাদের এখানে চলে আসুন| দায়ূদকে আপনার হাতে ধরিয়ে দেওয়া আমাদের কর্তব্য|” 21 শৌল বললেন, “তোমরা আমাকে সাহায্য করেছ| প্রভু তোমাদের মঙ্গল করুন| 22 যাও, দায়ূদ সম্বন্ধে আরও খোঁজখবর করো| দেখ, কোথায় সে রযেছে, কে কে দায়ূদকে সেখানে দেখেছে| শৌল ভাবলেন, ‘দায়ূদ চালাক ও চতুর তাই হয়তো আমার সঙ্গে চালাকি করতে চাইছে|’ 23 শৌল বললেন, “দাযূদের লুকোনোর সমস্ত জায়গা খুঁজে বের করো| তারপর ফিরে এসে আমাকে সমস্ত জানাও| জানার পর আমি তোমাদের সঙ্গে যাব| দায়ূদ এখানে থাকলে আমি তোমাদের সঙ্গে যাব| দায়ূদ এখানে থাকলে আমি তাকে খুঁজে বের করবই| যিহূদায় বাড়ী বাড়ী খোঁজ করলেও ওকে আমি পেয়ে যাব|” 24 সীফের বাসিন্দারা সীফে ফিরে গেল| পরে শৌল সেখানে গেলেন| দায়ূদ আর তাঁর লোকরা থাকতেন মাযোন মরুভূমিতে| জায়গাটা ছিল যেশিমোনের দক্ষিণে| 25 শৌল তাঁর লোকদের নিয়ে দাযূদের খোঁজ করতে লাগলেন| কিন্তু এখানে লোকরা দায়ূদকে সাবধান করে দিল যে শৌল তাঁকে খুঁজছে| দায়ূদ যখন এটা শুনলেন তিনি মাযোন মরুভূমির ‘রক’ অঞ্চলে চলে গেলেন| এ খবর শৌলের কাছে পৌঁছে গেল| সেখানে দায়ূদকে ধরতে ছুটলেন| 26 একই পাহাড়ের একদিকে শৌল আর উল্টোদিকে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীরা| দায়ূদ শৌলের কাছে থেকে পালিয়ে যাবার জন্য তীব্রবেগে ছুটছিলেন| শৌলও দায়ূদকে ধরবার জন্য সৈন্যদের নিয়ে পাহাড়ের চারিদিক ঘিরে ফেললেন| 27 সেই সময় শৌলের কাছে একজন দূত এসে বলল, “শিগ্গির এসো, পলেষ্টীয়রা আমাদের আক্রমণ করতে আসছে|” 28 তখন শৌল দাযূদের পিছু নেওয়া বন্ধ করলেন| তিনি পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই করতে গেলেন| সেই কারণে লোকরা ঐ জায়গার নাম দিয়েছিল ‘পিছল শিলা|’ 29 দায়ূদ মাযোন মরুভূমি থেকে চলে গেলেন সুরক্ষিত দুর্গ নগরগুলোয| সেগুলি ঐন-গদীর কাছাকাছি অবস্থিত|
1 শৌল পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিলেন| এরপর লোকরা তাঁকে জানাল, “দায়ূদ ঐন্-গদীর কাছাকাছি একটা মরুভূমি অঞ্চলে রযেছে|” 2 তখন শৌল ইস্রাযেল থেক 3,000 জন পুরুষ বেছে নিলেন| শৌল তাদের সঙ্গে ‘বুনো ছাগলের শিলার’ কাছে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের খোঁজ করতে লাগলেন| 3 শৌল রাস্তার ধারে একটা মেষের গোযালে এসে পড়লেন| কাছাকাছি একটা গুহা ছিল| শৌল হাল্কা হতে গুহাটির ভিতর গেলেন| দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা গুহার ভিতরে অনেক দূরে লুকিয়ে ছিল| 4 সঙ্গীরা দায়ূদকে বলল, “প্রভু আজকের দিনটার কথাই বলেছিলেন| তিনি আপনাকে বলেছিলেন, ‘আমি আপনার কাছে আপনার শত্রুকে এনে দেব| তারপর আপনি একে নিয়ে যা খুশি তাই করুন|”দায়ূদ হামাগুড়ি দিয়ে এসে ক্রমে শৌলের বেশ কাছে এসে পড়লেন| তারপর তিনি শৌলের জামার একটা কোণ কেটে ফেললেন| শৌল দায়ূদকে দেখতে পান নি| 5 পরে এর জন্য দাযূদের মন খারাপ হয়ে গেল| 6 দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের বললেন, “আমি আশা করি আমার মনিবের বিরুদ্ধে এই ধরণের কাজ প্রভু আর আমায় করতে দেবেন না| শৌল হচ্ছেন প্রভুর মনোনীত রাজা| আমি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু করব না|” 7 এই কথা বলে দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের থামিয়ে দিলেন| তাদের শৌলকে আঘাত করতে তাদের নিষেধ করে দিলেন|শৌল গুহা ছেড়ে নিজ রাস্তায় চললেন| 8 দায়ূদ গুহা থেকে বেরিয়ে এসে চেঁচিয়ে শৌলকে ডাকলেন, “হে রাজা, হে মনিব|”শৌল পেছন ফিরে তাকালেন| দায়ূদ আভূমি মাথা নোযালেন| 9 তিনি শৌলকে বললেন, “লোকরা যখন বলে, ‘দায়ূদ আপনাকে হত্যা করতে চায, তখন সে কথায় আপনি কান দেন কেন?’ 10 আমি আপনাকে মারতে চাই না| আপনি নিজের চোখেই দেখে নিন| এই গুহাতে আজ প্রভু আপনাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন| কিন্তু আমি আপনাকে হত্যা করতে চাই না| আমি আপনার ওপর সদয ছিলাম| আমি বললাম, ‘আমি আমার মনিবকে হত্যা করতে চাই না| শৌল হচ্ছেন প্রভুর অভিষিক্ত রাজা|’ 11 আমার হাতের এই টুকরো কাপড়টার দিকে চেয়ে দেখুন| আপনার পোশাক থেকে আমি এটা কেটে নিয়েছিলাম| আমি আপনাকে হত্যা করতে পারতাম, কিন্তু করিনি| একটা ব্যাপার আমি আপনাকে বোঝাতে চাই| আপনার বিরুদ্ধে আমি কোন ষড়যন্ত্র করি নি| আপনার প্রতি আমি কোন অন্যায় করি নি বরং আপনিই আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, আমায় হত্যা করার জন্য| 12 বয়ং প্রভুই এর বিচার করবেন| তিনিই আমার ওপর অবিচার করার জন্য আপনাকে শাস্তি দেবেন| আমি নিজে আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করব না| 13 একটা পুরানো প্রবাদ আছে:‘মন্দ লোকদের কাছ থেকেই মন্দ জিনিসগুলো আসে|’আমি আপনার ওপর কোনো মন্দ কাজ করি নি, আমি আপনার ক্ষতি করবো না| 14 কার পেছনে আপনি ধাওযা করছেন? কার সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজা যুদ্ধ করতে চলেছেন? আপনাকে আঘাত করবে এমন কারোর পেছনে আপনি ছুটছেন না| মনে হচ্ছে আপনি যেন একটা মৃত কুকুর অথবা একটা নীল মাছির পেছনে তাড়া করছেন| 15 প্রভু এর সুবিচার করুন| তিনিই ঠিক করুন আপনার এবং আমার মধ্যে কে ভাল, কে খারাপ| প্রভু আমাকে সমর্থন করবেন এবং প্রমাণ করবেন যে আমি ঠিক কাজটি করেছি| প্রভু আপনার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করবেন|” 16 দায়ূদ থামলেন| শৌল জিজ্ঞেস করলেন, “দায়ূদ পুত্র আমার, এ কি তোমার স্বর? এ কার স্বর শুনছি?” এই বলে শৌল কাঁদতে শুরু করলেন| তিনি খুব কাঁদতে লাগলেন| 17 শৌল বললেন, “তুমিই ঠিক, আমি ভুল করেছি| তুমি আমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করলেও আমি তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি| 18 যা যা ভালো তুমি করেছ সবই আমাকে বলেছ| প্রভু আমাকে তোমার কাছে এনে দিয়েছিলেন, কিন্তু তুমি আমাকে হত্যা করো নি| 19 এতেই প্রমাণ হয় যে আমি তোমার শত্রু নই| একবার শত্রুকে ধরলে কেউ আবার তাকে ছেড়ে দেয? শত্রুর জন্য সে কখনও ভালো কাজ করে না| আজ তুমি আমায় যে অনুগ্রহ করলে তার জন্য প্রভু তোমায় পুরস্কৃত করবেন| 20 আমি জানি তুমি ইস্রায়েলের রাজা হবে| আমি জানি যে তুমি ইস্রাযেল রাজ্যের ওপর শাসন করবে| 21 আমাকে তুমি কথা দাও, প্রভুর নামে এই শপথ করো, কথা দাও আমার উত্তরপুরুষদের কাউকে তুমি হত্যা করবে না| কথা দাও, আমার নাম আমাদের বংশ থেকে তুমি মুছে দেবে না|” 22 দায়ূদ শৌলকে প্রতিশ্রুতি দিলেন| তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি শৌলের পরিবারের কাউকে হত্যা করবেন না| তারপর শৌল ফিরে গেলেন| দায়ূদ এবে তাঁর সঙ্গীরা দুর্গে চলে গেলো|
1 শমূয়েল মারা গেল| সমস্ত ইস্রাযেলবাসীরা একত্রিত হল এবং শমূযেলের মৃত্যুর জন্যে শোক প্রকাশ করল| তারা শমূয়েলকে রামায় তার বাড়িতে কবর দিল| তারপর দায়ূদ পারণ মরুভূমির দিকে চলে গেলেন| 2 মাযোন শহরে এক মস্ত বড় ধনী বাস করত| তার 3,000 মেষ আর 1,000 ছাগল ছিল| সে তার মেষেদের থেকে পশম ছাঁটবার জন্য কর্ম্মিলে গিয়েছিল| 3 সেই ব্যক্তির নাম নাবল, সে কালেব পরিবারের লোক| নাবলের স্ত্রীর নাম অবীগল| সে যেমন জ্ঞানী তেমনি সুন্দরী| কিন্তু নাবল ছিল অত্যন্ত নীচ প্রকৃতির আর নিষ্ঠুর ধরণের ব্যক্তি| 4 দায়ূদ মরুভূমিতে থাকতে থাকতেই শুনেছিলেন নাবল মেষের গা থেকে পশম ছাঁটছে| 5 দায়ূদ দশজন যুবককে নাবলের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঠিয়েছিলেন| তিনি বললেন, “কর্ম্মিলে গিয়ে নাবলকে খুঁজে বের করো| তারপর তাকে আমার হয়ে অভিবাদন জানিও|” 6 দায়ূদ নাবলের জন্য এই বার্তা দিলেন, “আশা করছি তুমি ও তোমার পরিবারের সকলে ভাল আছো| তোমাদের যা যা আছে সবই ভাল আছে| 7 শুনলাম, তুমি নাকি মেষের গা থেকে পশম ছেঁটে নিচ্ছ| তোমার মেষপালকরা আমাদের কাছে কিছুদিন ছিল| আমরা তাদের কোন ক্ষতি করি নি| তারা যখন কর্ম্মিলে ছিল তখন তাদের কাছ থেকে আমরা কিছুই নিইনি| 8 তোমার ভৃত্যদের জিজ্ঞেস করে দেখবে কথাটা কতখানি সত্য| অনুগ্রহ করে আমার পাঠানো যুবকদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবে| এই শুভ দিনে আমরা তোমার কাছে এসেছি| এদের যথাসাধ্য দান করো| আশা করি আমার জন্য এটুকু করবে| ইতি তোমার বন্ধুদায়ূদ|” 9 দাযূদের লোকরা নাবলের কাছে গিয়ে বার্তাটা দিল| 10 কিন্তু নাবল তাদের সঙ্গে জঘন্য ব্যবহার করল| সে বলল, “কে দায়ূদ? যিশয়ের পুত্র কে? কত ক্রীতদাস যে মনিবের কাছ থেকে আজকাল পালিয়ে যাচ্ছে| 11 আমার কাছে রুটি আছে, জল আছে, মাংসও আছে| আমার ভৃত্যদের জন্য পশু বলি দিয়ে সেই মাংসের ব্যবস্থা করেছি| তারা আমার মেষগুলোর গা থেকে পশম কেটে নেয| কিন্তু যাদের আমি চিনি না, তাদের কিছুতেই তা দেব না|” 12 দাযূদের লোকরা ফিরে এলো| যা যা হয়েছে সব তারা দায়ূদকে বলল| 13 সব শুনে দায়ূদ বললেন, “এবার তরবারি নাও|” দায়ূদ ও তাঁর লোকরা কোমরে তরবারি এঁটে নিল| প্রায 400 জন দাযূদের সঙ্গে গেল| দ্রব্যসামগ্রী রক্ষার জন্যে 200 জন রইল| 14 নাবলের একজন ভৃত্য নাবলের স্ত্রী অবীগলকে বলল, “দায়ূদ মরুভূমি থেকে দূত পাঠিয়েছিলেন আমাদের মনিবের (নাবলের) কাছে| কিন্তু নাবল তাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেনি| 15 অথচ তারা আমাদের সঙ্গে য়থেষ্ট ভাল ব্যবহার করেছিল| আমরা যখন মাঠে মেষ চরাতে যেতাম তখন দাযূদের লোকরা সবসময় আমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকত| ওরা কখনও কোন অন্যায় করে নি| আমাদের কিছু চুরিও যায় নি| 16 দাযূদের লোকরা আমাদের দিন রাত পাহারা দিত| আমাদের চারপাশে ওরা ছিল প্রাচীরের মতো| আমরা যখন মেষদের দেখাশুনা করতাম তখন ওরা আমাদের রক্ষা করত| 17 এখন ভেবে দেখুন, আপনি কি করতে পারেন| নাবল এতো পাষণ্ড যে তার সঙ্গে কথা বলে তার মন পরিবর্তন করানো অসম্ভব| আমাদের মনিব আর তার সংসারে ঘোর দুর্য়োগ ঘনিয়ে আসছে|” 18 অবীগল এই শুনে আর বিন্দুমাত্র দেরী না করে 200 রুটি, দুটো থলে ভর্তি দ্রাক্ষারস, পাঁচটা মেষের রান্নাকরা মাংস, প্রায এক বুশেল রান্না ডাল, 2 কোযার্ট কিস্মিস, 200 টি ডুমুরের পিঠে এই সব জোগাড় করে গাধার পিঠে চাপিয়ে দিল| 19 তারপর অবীগল ভৃত্যদের বলল, “তোমরা এগিয়ে যাও| আমি তোমাদের পেছন পেছন আসছি|” এ কথা সে তার স্বামীকে বলল না| 20 অবীগল তার গাধার পিঠে চড়ল এবং পর্বতের অন্য দিকে নেমে চলে গেল| অন্যদিক থেকে দায়ূদ তাঁর লোকদের সঙ্গে নিয়ে আসছিলেন| 21 অবীগলের সঙ্গে দেখা হবার আগে দায়ূদ বললেন, “মরুভূমিতে আমি নাবলের সম্পত্তি রক্ষা করেছিলাম| তার একটাও মেষ যাতে হারিয়ে না যায় সেই দিকে কড়া নজর রেখেছিলাম| কিন্তু এত উপকার কোন কাজেই লাগল না| আমি তার ভাল করলেও সে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করল| 22 এবার নাবলের বাড়ির একজনকেও যদি কাল সকাল পর্য়ন্ত বাঁচিয়ে রাখি তাহলে ঈশ্বর যেন আমাকে শাস্তি দেন|” 23 ঠিক তখনই অবীগল তার কাছে এসে গেল| দায়ূদকে দেখে মাথা নীচু করে দাযূদের পাযে পড়ল| 24 দাযূদের পাযে পড়ে অবীগল বলল, “মহাশয়, দয়া করে আমাকে কিছু বলতে অনুমতি দিন| আমার কথা শুনুন| যা হয়েছে তার জন্য আপনি আমাকে দোষী করুন| 25 আমি আপনার দূতদের দেখি নি| এ অপদার্থ লোকটাকে আপনি মোটেই গ্রাহ্য করবেন না| তার যেমন নাম, সে তেমনি লোক| তার নামের অর্থ ‘দুষ্ট’ আর সে সত্যিই মন্দ কাজ করে| 26 প্রভু আপনাকে নিরীহ লোকদের হত্যা করতে দেন নি| জীবন্ত প্রভুর দিব্য এবং আপনার জীবিত প্রাণের দিব্য, যারা আপনার শত্রু, যারা আপনার ক্ষতি করতে চায তারা সকলেই নাবলের মতো হোক্| 27 এখন আমি আপনার জন্য এই উপহার এনেছি| আপনি আপনার যুবকদের এসব দান করুন| 28 আমি যে অন্যায় করেছি তার জন্য আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে ক্ষমা করুন| প্রভু আপনার পরিবারের সকলকে শক্তিশালী করবেন| আপনার পরিবার থেকেই আবির্ভাব হবে অনেক রাজার| প্রভু এটাই করবেন, কারণ আপনি তাঁর হয়ে যুদ্ধ করেন| যতদিন আপনি বেঁচে আছেন লোকে আপনার কোন দোষ খুঁজে পাবে না| 29 যদি কেউ আপনাকে হত্যা করতে আসে, প্রভু আপনার ঈশ্বরই, আপনাকে রক্ষা করবেন| আপনার শত্রুদের তিনি গুলতির ঢিলের মতো ছুঁড়ে ফেলে দেবেন| 30 প্রভু আপনার জন্য অনেক ভাল কিছু করবার প্রতিশ্রুতি করেছেন এবং তিনি অবশ্যই তাঁর সকল প্রতিশ্রুতি রাখবেন| তিনি আপনাকে ইস্রায়েলের নেতা করবেন| 31 নিরীহ মানুষকে হত্যা করে পাপের ভাগী আপনি হবেন না| সেই ফাঁদে আপনি পা দেবেন না| প্রভু আপনাকে যখন জয়যুক্ত করবেন তখন আপনি দয়া করে আমায় স্মরণ করবেন|” 32 দায়ূদ অবীগলকে বললেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা কর| তিনি তোমাকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন বলে তাঁর প্রশংসা কর| 33 তোমার সুবিচারের জন্য ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করুন| আজ তুমি নিরীহ মানুষদের হত্যা করার পাপ থেকে আমাকে বাঁচালে| 34 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে আমি শপথ করছি, তুমি যদি আমার সঙ্গে তাড়াতাড়ি দেখা করতে না আসতে তাহলে নাবলের বাড়ির লোকরা কেউ কাল সকাল পর্য়ন্ত বেঁচে থাকত না|” 35 দায়ূদ অবীগলের উপহার গ্রহণ করলেন| তিনি তাকে বললেন, “তুমি শান্তিতে বাড়ী যাও| আমি তোমার অনুরোধ শুনেছি| তুমি যা কিছু চেয়েছ আমি তা করব|” 36 অবীগল নাবলের কাছে ফিরে এলো| নাবল তখন বাড়িতে রাজার মতো তার খাবার খাচ্ছিল| সে মাতাল ছিল এবং খুশী ছিল| তাই সকাল না হওয়া পর্য়ন্ত অবীগল তাকে কিছু বলল না| 37 পরদিন সকালে নাবলের হুঁশ ফিরে এল| তখন অবীগল তাকে সব কথা খুলে বলল| তখন নাবল হৃদরোগে আক্রান্ত হল| দশ দিন ধরে সে পাথরের মতো অনড় হয়ে রইল| 38 প্রায দশ দিন পর প্রভু নাবলের মৃত্যু ঘটালেন| 39 নাবলের মৃত্যু সংবাদ শুনে দায়ূদ বললেন, “প্রভুর প্রশংসা করো| নাবল আমার সম্পর্কে খারাপ কথা বলেছিল, কিন্তু প্রভু আমাকে সমর্থন করলেন| তিনি আমায় কোন অন্যায় করতে দেন নি| নাবল অন্যায় করেছিল বলেই তিনি তার মৃত্যু ঘটালেন|”তারপর দায়ূদ অবীগলকে একটা চিঠি পাঠালেন| তাকে তাঁর স্ত্রী হিসাবে পাবার জন্য প্রস্তাব করলেন| 40 দাযূদের অনুচররা কর্ম্মিলে গিয়ে অবীগলকে বলল, “আপনাকে নিয়ে যাবার জন্য দায়ূদ আমাদের পাঠিয়েছেন| তিনি আপনাকে বিবাহ করতে চান|” 41 অবীগল মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করে বলল, “আমি তোমাদের দাসী| তোমাদের সেবা করতে আমি প্রস্তুত| আমার মনিবের (দাযূদের) সেবকদের পা ধুয়ে দিতে আমি প্রস্তুত|” 42 অবীগল আর দেরী না করে দাযূদের অনুচরদের সঙ্গে একটা গাধার পিঠে চড়ে রওনা হল| তার সঙ্গে ছিল পাঁচ দাসী| অবীগল, দাযূদের স্ত্রী হলেন| 43 দায়ূদ য়িষ্রিযেলীয অহীনোযমকেও বিবাহ করেছিলেন| অবীগল আর অহীনোযম দুজনেই দাযূদের স্ত্রী হল| 44 দায়ূদ শৌলের কন্যা মীখলকেও বিবাহ করেছিলেন| কিন্তু শৌল দাযূদের কাছে থেকে তার কন্যাকে সরিয়ে এনে তার সঙ্গে পল্টির বিয়ে দিলেন| পল্টির পিতার নাম লাযিশ| পল্টির বাড়ি ছিল গল্লীম শহরে|
1 সীফের লোকরা শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গিবিয়ায় গেল| তারা শৌলকে বলল, “দায়ূদ হখীলার পাহাড়ে লুকিয়ে রযেছে| যেশিমোনের ঠিক অপর দিকেই সেই পাহাড়| 2 সীফের মরুভূমিতে শৌল নেমে এলেন| সমস্ত ইস্রাযেল থেকে শৌল 3000 সৈন্য বেছে নিয়েছিলেন| এদের নিয়ে শৌল সীফের মরু অঞ্চলে দায়ূদকে খুঁজতে লাগলেন| 3 হখীলা পাহাড়ে শৌল তাঁবু বসালেন| যেশিমোনের রাস্তার ধারেই ছিল সেই তাঁবু|দায়ূদ মরুভূমির মধ্যে বাস করতেন| তিনি জানতে পারলেন যে শৌল সেখানেও তার পিছু নিয়েছেন| 4 তখন তিনি গুপ্তচর পাঠালেন| শৌল যে হখীলায় এসেছেন সে খবর তিনি জানতেন| 5 দায়ূদ শৌলের শিবিরে উপস্থিত হলেন| তিনি দেখলেন কোথায় শৌল আর অব্নের ঘুমাচ্ছিলেন| (অব্নের, শৌলের সেনাপতি, নেরের পুত্র|) শৌল শিবিরের মাঝখানে ঘুমোচ্ছিলেন| সৈন্যরা তাঁর চারপাশে ছিল| 6 দায়ূদ হিত্তীয় অহীমেলক আর সরূযার পুত্র অবীশযের সঙ্গে কথা বললেন| (অবীশয য়োয়াবের ভাই|) তিনি তাদের বললেন, “কে আমার সঙ্গে শৌলের শিবিরে যাবে?”অবীশয উত্তরে বলল, “আমি তোমার সঙ্গে যাব|” 7 রাত হলে দায়ূদ ও অবীশয শৌলের শিবিরে গেলেন| শৌল শিবিরের মাঝখানে ঘুমোচ্ছিলেন| তাঁর মাথার কাছে মাটিতে তাঁর বর্শা গাঁথা ছিল| অব্নের ও অন্যান্য সৈন্যরা শৌলের চারপাশে ঘুমাচ্ছিল| 8 অবীশয দায়ূদকে বলল, “আজ ঈশ্বরের দয়ায় আপনি শত্রু জয় করবেন| শৌলের বর্শা দিয়ে শৌলকে মাটিতে গেঁথে দিতে চাই| শুধু একবার আপনি এই কাজটা আমায় করতে দিন|” 9 দায়ূদ অবীশযকে বললেন, “শৌলকে হত্যা কোরো না| প্রভু যাকে রাজা বলে মনোনীত করেছেন তাকে কেউ যেন আঘাত না করে| আঘাত করলে সে অবশ্যই শাস্তি পাবে| 10 প্রভু যখন আছেন তখন তিনি নিশ্চয়ই নিজেই শৌলকে শাস্তি দেবেন| তাছাড়া শৌলের স্বাভাবিক মৃত্যুও হতে পারে| কিংবা এও হতে পারে যুদ্ধেই শৌল মারা যাবেন| 11 সে যাই হোক্ আমি চাই না যে প্রভু তাঁর নির্বাচিত রাজাকে আমার হাত দিয়ে হত হতে দেন| এখন শৌলের মাথার কাছে বর্শা আর জলের জায়গাটা তুলে নাও| তারপর আমরা চলে যাব|” 12 সেই মত দায়ূদ বর্শা আর কুঁজো নেবার পর অবীশযকে সঙ্গে নিয়ে তাঁবু থেকে বের হলেন| কেউ কিছু জানতে পারল না| কেউ ঘুম থেকে জেগেও উঠল না| শৌল আর সৈন্যরা সকলেই গাঢ় ঘুমে ঢলে পড়েছিল কারণ প্রভু তাদের গাঢ় ঘুমে আক্রান্ত করেছিলেন| 13 দায়ূদ উপত্যকা পেরিযে পাহাড়ের শিখরে গিয়ে দাঁড়ালেন| সেই জায়গা থেকে শৌলের শিবির অনেক দূরে ছিল| 14 দায়ূদ সৈন্যসামন্ত আর নেরের পুত্র অব্নেরের দিকে চিত্কার করে বললেন, “অব্নের জবাব দাও|”অব্নের উত্তর দিলো, “কে তুমি? কেন তুমি রাজাকে ডাকছ?” 15 দায়ূদ বললেন, “তুমি তো একজন মানুষ, তাই না? ইস্রায়েলের আর পাঁচটা মানুষের চেয়ে তুমি সেরা, ঠিক কি না? তাহলে কেন তুমি তোমার মনিবকে পাহারা দিলে না? একজন সাধারণ মানুষ তাঁবুতে ঢুকে তোমাদের মনিবকে খুন করতে এসেছিল| 16 তুমি মস্ত বড় ভুল করেছ| আমি প্রভুর নামে শপথ করে বলছি, তোমাকে আর তোমার লোকদের অবশ্যই মরতে হবে| তুমি কি জানো কেন? কারণ তুমি প্রভুর নির্বাচিত রাজা অর্থাত্ তোমার মনিবকে রক্ষা কর নি| শৌলের মাথার কাছে কোথায় রাজার বর্শা আর জলের কুঁজো আছে? খুঁজে দেখো, কোথায়?” 17 শৌল দাযূদের স্বর চিনতেন| সে বলল, “বত্স দায়ূদ, তুমিই কি কথা বলছ?”দায়ূদ উত্তর দিলেন, “হে প্রভু, হে রাজন, আপনি আমারই কন্ঠস্বর শুনছেন|” 18 দায়ূদ আবার বললেন, “আপনি কেন আমার পিছু নিয়েছেন? আমি কি অন্যায় করেছি? কি আমার দোষ? 19 হে আমার মনিব, হে রাজা, আমার কথা শুনুন| আপনি যদি আমার ওপর রাগ করে থাকেন এবং প্রভু যদি এর কারণ হয়ে থাকেন তাহলে তাঁকে তাঁর নৈবেদ্য গ্রহণ করতে দিন| কিন্তু যদি লোকদের কারণে আপনি আমার ওপর রাগ করে থাকেন, তাহলে প্রভু যেন তাদের মন্দ করেন| প্রভু আমায় যে দেশ দান করেছেন সেই দেশ আমি লোকদেরই চাপে ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি| তারা আমায় বলেছে, ‘যাও, ভিন্দেশীদের সঙ্গে বাস করো| সেখানে গিয়ে অন্য মূর্ত্তির পূজা করো|’ 20 শুনুন, প্রভুর সান্নিধ্য থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে আমায় মরতে দেবেন না| ইস্রায়েলের রাজা একটা নীল মাছি খুঁজতে বেরিয়ে এসেছেন| যেমন কেউ পর্বতে উঠে সামান্য একটা তিতির পাখীকে তাড়া করে শিকার করে| 21 তখন শৌল বললেন, “আমি পাপ করেছি| বত্স দায়ূদ, তুমি ফিরে এসো| আজ তুমি দেখালে, তোমার কাছে আমার জীবন কত প্রয়োজনীয়| আমি তোমাকে হত্যা করব না| আমি বোকার মত কাজ করেছি| কি ভুলই আমি করেছি!” 22 দায়ূদ বললেন, “এই দেখুন রাজার বর্শা| আপনার একজন যুবককে এখানে পাঠিয়ে দিন| সে এটা নিয়ে যাক্| 23 প্রভু প্রতিটি মানুষকে তার কর্মের জন্য প্রতিদান দিয়ে থাকেন| যদি সে উচিত্ কাজ করে তাহলে তিনি তাকে পুরস্কার দেন আর যদি সে অন্যায় করে তাহলে তিনি তাকে শাস্তি দেন| আজ তিনি আপনাকে হারানোর জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন| কিন্তু আমি তাঁর মনোনীত রাজাকে কিছুতেই আঘাত করতে পারি না| 24 আজ আপনাকে আমি দেখালাম যে, আপনার জীবন আমার কাছে কত মূল্যবান| একইভাবে প্রভুও দেখাবেন, তাঁর কাছে আমার জীবনও কত মূল্যবান| প্রভু আমাকে সব রকম বিপদ থেকে রক্ষা করবেন|” 25 শৌল দায়ূদকে বললেন, “বত্স দায়ূদ, ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন| তুমি অনেক মহত্ কর্ম করবে এবং তুমি সফল হবে|” দায়ূদ নিজের পথে চলে গেলেন, আর শৌল তাঁর জায়গায় ফিরে গেলেন|
1 দায়ূদ মনে মনে বললেন, “একদিন না একদিন শৌল আমাকে নিশ্চয়ই ধরবেন| সবচেয়ে ভাল হয় যদি আমি পলেষ্টীয়দের দেশে চলে যাই| তাহলে শৌল আমাকে ইস্রায়েলে খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন| এভাবে আমি শৌলের হাত থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো|” 2 সুতরাং 600 জন পুরুষ নিয়ে দায়ূদ ইস্রায়েল ছেড়ে চলে গেলেন| তারা মাযোকের পুত্র আখীশের কাছে গেলেন| আখীশ তখন গাতের রাজা| 3 দায়ূদ সপরিবারে তাঁর যুবকদের সঙ্গে গাতের আখীশের সঙ্গে থেকে গেলেন| দাযূদের সঙ্গে ছিল তাঁর দুই স্ত্রী| য়িষ্রিযেলের অহীনোযম আর কর্ম্মিলীয অবীগল| অবীগল নাবলের বিধবা পত্নী| 4 সবাই শৌলকে বলল, দায়ূদ গাত্ দেশে পালিয়ে গেছে| তাই শৌল আর দায়ূদকে খুঁজলেন না| 5 দায়ূদ আখীশকে বললেন, “আপনি যদি আমার ওপর প্রসন্ন হন, তবে আপনার যে কোন একটা শহরে আমাকে থাকতে দিন| আমি আপনার একজন ভৃত্য মাত্র| সেখানেই আমার উপযুক্ত জায়গা| এই রাজধানীতে আপনার কাছে থাকা আমার মানায না|” 6 সেদিন আখীশ দায়ূদকে সিক্লগ শহরে পাঠালেন| সেহেতু সিক্লগ আজ পর্য়ন্ত যিহূদা রাজাদের শহর হয়ে আছে| 7 এক বছর চার মাস দায়ূদ পলেষ্টীয়দের সঙ্গে ছিলেন| 8 দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা অমালেকীয়, গশূরীয, গির্ষীয অধিবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন, যারা সেই মিশর পর্য়ন্ত শূরের কাছে টেলেম অঞ্চলে বাস করত| দাযূদের কাছে তারা পরাজিত হল| তাদের সব ধনসম্পদ দাযূদের হাতে গেলো| 9 ঐ অঞ্চলের সকলকে হারিয়ে দায়ূদ তাদের মেষ, গরু, গাধা, উট, বস্ত্র সবকিছু নিয়ে আখীশের কাছে তুলে দিলেন| কিন্তু দায়ূদ এই লোকদের মধ্যে একজনকেও জীবিত রাখলেন না| 10 এরকম লড়াই দায়ূদ অনেকবার করেছিলেন| প্রত্যেকবারই আখীশ দায়ূদকে জিজ্ঞাসা করতেন কোথায় সে যুদ্ধ করে এত সব জিনিস এনেছে| দায়ূদ বলতেন, “আমি যুদ্ধ করেছি এবং যিহূদার দক্ষিণ অঞ্চল জিতেছি|” অথবা “আমি যুদ্ধ করে য়িরহমীলের দক্ষিণ দিক জিতেছি,” অথবা বলতেন, “আমি কেনীয়দের দক্ষিণে লড়াই করে জিতেছি|” 11 দায়ূদ গাতে কাউকেই জীবিত আনতেন না| তিনি ভাবলেন, “যদি আমরা কাউকে জীবিত রাখি তাহলে সে আখীশকে বলে দেবে আমি কি করেছি|”পলেষ্টীয়দের দেশে থাকার সময় দায়ূদ সব সময় এই ধরণের কাজ করতেন| 12 আখীশ দায়ূদকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন| আখীশ মনে মনে বলতেন, “নিজের লোকরাই এখন দায়ূদকে ঘৃণা করছে| ইস্রায়েলীয়রা তাকে একেবারেই দেখতে পারে না| এখন থেকে চিরদিন দায়ূদ আমার সেবা করবে|”
1 পরে পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সংগ্রহ করতে লাগল| আখীশ দায়ূদকে বললেন, “লোকদের নিয়ে তুমি আমার সঙ্গে ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যাবে, বুঝতে পেরেছ?” 2 দায়ূদ বললেন, “নিশ্চয়ই, দেখবেন আমি কি করি|” আখীশ বললেন, “বেশ! তুমি হবে আমার দেহরক্ষী| সবসময় তুমি আমাকে রক্ষা করবে|” 3 শমূয়েল মারা গেল| তার মৃত্যুতে ইস্রায়েলীয়রা সকলেই শোক প্রকাশ করল| তারা তাকে তার নিজের দেশ রামায় কবর দিলযারা প্রেতাত্মা নামায আর ভবিষ্যত্ বলতে পারে তাদের সকলকে শৌল বলপূর্বক ইস্রাযেল থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন| 4 পলেষ্টীয়রা যুদ্ধের জন্য তৈরী হল| তারা শূনেমে তাঁবু খাটাল| ইস্রায়েলীয়দের নিয়ে শৌল গিলবোয তাঁবু খাটালেন| 5 পলেষ্টীয় সৈন্যদের দেখে শৌল ভয় পেয়ে গেলেন| ভয়ে তাঁর বুক কাঁপতে লাগ| 6 শৌল, প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন| কিন্তু প্রভু সে প্রার্থনার কোন উত্তর দিলেন না| স্বপ্নের মধ্যেও ঈশ্বর শৌলকে কিছু বললেন না| ঊরীমের দ্বারাও ঈশ্বর উত্তর দিলেন না| কোনো ভাববাদীর মাধ্যমেও ঈশ্বর শৌলের উদ্দেশ্যে কোন বাণী শোনালেন না| 7 অবশেষে, শৌল তাঁর আধিকারিকদের বললেন, “একজন স্ত্রীলোকের খোঁজ কর যে একজন প্রেতাত্মার মাধ্যম| তাকে জিজ্ঞেস করব যুদ্ধে কি হতে পারে|”তারা বলল, “ঐন্-দোরে এরকম একজন আছে|” 8 শৌল নানারকম পোশাকে সাজলেন যাতে কেউ তাঁকে চিনতে না পারে| সেই রাত্রে শৌল দুজন লোক নিয়ে সেই স্ত্রীলোকটিকে দেখতে গেলেন| তারপর তার দেখা পেয়ে শৌল বললেন, “আমি চাই তুমি একা আত্মাকে উঠিযে আন| সে আমায় ভবিষ্যতে কি হবে না হবে তা বলবে| আমি যার নাম বলব তুমি তাকে ডেকে আনবে|” 9 সেই স্ত্রীলোকটি বলল, “শৌল যা করেছেন তার সবই আপনি জানেন| তিনি তো ইস্রায়েলের থেকে সব জ্যোতিষী আর ভূত নামানো মাধ্যমদের জোর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন| আপনি আমায় আসলে ফাঁদে ফেলে মেরে ফেলতে চাইছেন|” 10 শৌল প্রভুর নামে শপথ করে সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, “প্রভুর দিব্য দিয়ে বলছি যে তুমি এর জন্যে শাস্তি ভোগ করবে না|” 11 স্ত্রীলোকটি বলল, “আপনার জন্য কাকে এনে দিতে হবে?”শৌল বললেন, “শমূয়েলকে উঠিযে আন|” 12 তাই হল| স্ত্রীলোকটি শমূয়েলকে দেখতে পেয়ে চিত্কার করে উঠল| সে শৌলকে বলল, “তুমি আমাকে প্রতারণা করেছ, তুমিই তো শৌল|” 13 রাজা সেই স্ত্রীলোকটিকে বলল, “ভয় পেও না| তুমি কি দেখছ?”স্ত্রীলোকটি বলল, “আমি দেখছি একটা আত্মা ভূমি থেকে উঠে আসছে|” 14 শৌল বলল, “তাকে কার মতো দেখতে?” স্ত্রীলোকটি বলল, “তাকে দেখতে বিশেষ পোশাক পরা একজন বৃদ্ধলোকের মতো|”শৌল বুঝতে পারলেন উনি হচ্ছেন শমূয়েল| শৌল মাথা নোযালেন| মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লেন| 15 শমূয়েল শৌলকে বলল, “তুমি কেন আমাকে বিরক্ত করছ? কেন আমাকে তুলে আনলে?”শৌল বললেন, “আমি বিপদে পড়েছি| পলেষ্টীয়রা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছে, কিন্তু ঈশ্বর আমায় ত্যাগ করেছেন| তিনি আমার ডাকে আর সাড়া দিচ্ছেন না| কোনো ভাববাদী বা কোনো স্বপ্নের মধ্যে দিয়েও তিনি উত্তর দিচ্ছেন না| তাই আমি আপনাকে ডেকেছি| আপনি বলুন আমাকে কি করতে হবে?” 16 শমূয়েল বললেন, “প্রভু তোমায় ত্যাগ করেছেন| তিনি এখন তোমার প্রতিবেশী (দাযূদের) কাছে| তবে কেন আমায় জ্বালাতন করছ? 17 আমার মাধ্যমে প্রভু তোমাকে জানিয়েছেন তিনি কি করবেন| এখন তিনি তাঁর কথা অনুযায়ীকাজ করছেন| তিনি তোমার হাত থেকে রাজত্ব কেড়ে নিচ্ছেন| তিনি তোমার একজন প্রতিবেশীকে সেই রাজ্য সমর্পণ করছেন| সেই প্রতিবেশীর নাম দায়ূদ| 18 তুমি প্রভুর কথা মান্য করো নি| তুমি অমালেকীয়দের ধ্বংস করো নি এবং তাদের দেখাও নি যে প্রভু তাদের ওপর কত ক্রুদ্ধ ছিলেন| তাই তিনি তোমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করছেন| 19 তাঁর ইচ্ছাতেই পলেষ্টীয়রা তোমাকে আর ইস্রায়েলীয় য়োদ্ধাদের পরাজিত করবে| আগামীকাল তুমি আর তোমার পুত্রেরা এখানে আমার কাছে আসবে|” 20 শৌল সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে গেলেন| তিনি শুয়ে রইলেন| শমূযেলের কথায় তিনি বেশ ভয় পেয়েছিলেন| তাছাড়া সারাদিন সারারাত কিছু না খেয়ে তিনি খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন| 21 স্ত্রীলোকটি শৌলের কাছে এসে দেখল শৌল সত্যিই বেশ ভয় পেয়ে গেছেন| সে তাকে বলল, “শুনুন আমি আপনার দাসী| আপনার আদেশ আমি পালন করেছি| নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনার কথা আমি শুনেছি| 22 এখন দয়া করে আমার কথা শুনুন| আমি আপনাকে কিছু খেতে দিচ্ছি| আপনি খেয়ে শক্তি সঞ্চয় করুন যাতে পথে চলতে ফিরতে পারেন|” 23 কিন্তু শৌল কথা শুনলেন না| তিনি বললেন, “আমি খাব না|”এমনকি শৌলের আধিকারিকরাও স্ত্রীলোকটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে শৌলকে খাবার জন্যে মিনতি করতে লাগল| শেষ পর্য়ন্ত শৌল তাদের কথা শুনলেন| তিনি মাটি থেকে উঠে বিছানার ওপর বসলেন| 24 স্ত্রীলোকটির বাড়িতে একটি মোটাসোটা বাছুর ছিল| সে চট্পট্ বাছুরটিকে জবাই করল| কিছু মযদা খামির না দিয়ে মেখে হাতে লেচি তৈরী করে সেঁকে ফেলল| 25 শৌল ও কর্মচারীদের সে খেতে দিল| তারা খাওয়া দাওযা করে সেই রাত্রে উঠে বেরিয়ে পড়ল|
1 পলেষ্টীয়রা অফেকে সৈন্য জড়ো করল| ইস্রায়েলীয়রা তাঁবু গাড়ল য়িষ্রিযেল ঝর্ণার পাশে| 2 পলেষ্টীয় শাসকরা 100 জন সৈন্য এবং 1,000 জন সৈন্যের এক এক দল নিয়ে কুচকাওযাজ করে অগ্রসর হলেন| পেছনে পেছনে আখীশের সঙ্গে রইল দায়ূদ ও তার লোকরা| 3 পলেষ্টীয় সেনাপতিরা জিজ্ঞাসা করল, “এই ইব্রীযরা, এখানে কি করছে?”আখীশ বললেন, “এ হচ্ছে দায়ূদ, শৌলের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক| আমার সঙ্গে ও অনেকদিন রযেছে| শৌলকে ছেড়ে দেবার পর থেকে যতদিন দায়ূদ আমার কাছে রযেছে ততদিন ওর মধ্যে খারাপ কিছু দেখি নি|” 4 তবুও পলেষ্টীয় সেনাপতিরা আখীশের ওপর রেগে গেল| তারা বলল, “দায়ূদকে ফেরত পাঠিয়ে দাও| ওকে যে শহরে তুমি থাকতে দিয়েছ, সেখানে ওকে ফিরে যেতেই হবে| আমাদের সঙ্গে সে যুদ্ধে যাবে না| ওকে রাখা মানে একজন শত্রুকেই রাখা| সে আমাদের সৈন্যদের মেরে তার রাজা শৌলকেই খুশী করবে| 5 দায়ূদকে নিয়ে ইস্রায়েলীয়রা এই গান গেয়ে নাচানাচি করে:শৌল মেরেছে শত্রু হাজারে হাজারে| দায়ূদ মেরেছে অয়ুতে অয়ুতে! 6 তাই দায়ূদকে ডেকে আখীশ বললেন, “প্রভুর অস্তিত্বের মতোই নিশ্চিত যে তুমি আমার অনুগত| তোমাকে আমার সৈন্যদের মধ্যে রাখলে আমি খুশি হতাম| যেদিন থেকে তুমি আমার কাছে, আমি তোমার কোন অন্যায় দেখি নি| কিন্তু পলেষ্টীয় শাসকরা তোমাকে সমর্থন করে নি| 7 তুমি ফিরে যাও| পলেষ্টীয় রাজাদের বিরুদ্ধে তুমি কিছু করো না|” 8 দায়ূদ বললেন, “আমি কি এমন অন্যায় করেছি? আজ পর্য়ন্ত যতদিন আপনার সামনে আছি, আপনি কি এই দাসের কোন দোষ পেয়েছন? তবে কেন আমার মনিব মহারাজের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে দেবেন না?” 9 আখীশ উত্তর দিলেন, “আমি তোমায় একজন ভালো মানুষ হিসাবে গণ্য করি| তুমি একজন ঈশ্বরের দূতের মতো| কিন্তু কি করব, পলেষ্টীয় সেনাপতিরা বলছে, ‘দায়ূদ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবে না|’ 10 খুব সকালে তুমি লোকদের নিয়ে যে শহর আমি তোমাকে দিয়েছি সেই শহরে ফিরে যাও| সেনাপতিরা তোমার নামে যেসব নিন্দা করেছে সেসবে কান দিও না| তুমি ভাল লোক| তাই সূর্য় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তুমি চলে যাবে|” 11 অবশেষে দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা খুব সকালে পলেষ্টীয়দের দেশে ফিরে গেল এবং পলেষ্টীয়রা য়িষ্রিযেল পর্য়ন্ত গেল|
1 তৃতীয় দিনে দায়ূদ সিক্লগে উপস্থিত হল| সেখানে গিয়ে তারা দেখল অমালেকীয়রা সিক্লগ শহর আক্রমণ করেছে| তারা নেগেভ অঞ্চলে হানা দিয়েছিল| সিক্লগ শহর তারা পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল| 2 সিক্লগের স্ত্রীলোকদের তারা বন্দী হিসাবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল| যুবক বৃদ্ধ সকলকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তাদের কাউকে হত্যা করে নি| 3 দায়ূদ লোকদের সঙ্গে নিয়ে সিক্লগে এসে দেখলেন শহরটা দাউ দাউ করে জ্বলছে| তাদের স্ত্রীদের, ছেলেমেয়ে সকলকেই অমালেকীয়রা ধরে নিয়ে গেছে| 4 দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা চিত্কার করে কাঁদতে কাঁদতে একেবারে কাহিল হয়ে পড়ল| শেষে দুর্বলতায আর চিত্কার করতে পারল না| 5 অমালেকীয়রা দাযূদের দুই স্ত্রীকেই, য়িষ্রিযেলীয অহীনোযম আর নাবলের বিধবা অবীগলকে, ধরে নিয়ে গিয়েছিল| 6 সব সৈন্যরা দুঃখে আর রাগে অধীর হয়ে পড়েছিল, কারণ তাদের ছেলে মেয়েদের যুদ্ধ বন্দী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| তাই তারা দাযুদকে আক্রমণ করবার ও পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবার সিদ্ধান্ত নিল| দায়ূদ এসব শুনে মুষড়ে পড়লেন| কিন্তু প্রভু ঈশ্বরেম্প দায়ূদ তাঁর শক্তি খুঁজে পেলেন| 7 দায়ূদ যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এফোদটি এনে দাও এবং অবিয়াথর দায়ূদকে সেটা এনে দিলেন|” 8 তারপর দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, “যারা আমাদের ছেলেমেয়েদের ধরে নিয়ে গেছে, আমি কি তাদের পিছু নেব? আমি কি তাদের ধরতে পারব?”প্রভু বললেন, “যাও ওদের পিছু নাও| তুমি ওদের ধরতে পারবে| তুমি তোমার সকল পরিবারগুলিকে রক্ষা করতে পারবে|” 9 দায়ূদ 600 জন লোক নিয়ে বিষোর স্রোতের কাছে পৌঁছলেন| সেখানে তাঁর লোকদের প্রায 200 জন থাকল| তারা খুব দুর্বল আর ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল| তারা আর চলতে পারছিল না| তাই 400 জন পুরুষ নিয়ে দায়ূদ অমালেকীয়দের তাড়া করলেন| 10 11 দাযূদের লোকরা মাঠের মধ্যে একজন মিশরীয়কে দেখতে পেল| তারা তাকে দাযূদের কাছে নিয়ে এসে জল আর কিছু খাবার দিল| 12 ডুমুরের পিঠে আর দুমুঠো কিস্মিস্ ওকে খেতে দিল| খাওয়া দাওযার পর সে একটু ভাল বোধ করল| তিনদিন তিনরাত সে কোন কিছু খেতে পায় নি বা পান করতে পায় নি| 13 মিশরীয় লোকটাকে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “কে তোমার মনিব? কোথা থেকে তুমি আসছ?”লোকটি বলল, “আমি একজন মিশরীয়| অমালেকের ক্রীতদাস| তিনদিন আগে আমি অসুস্থ হওয়ায আমার মনিব আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়| 14 আমরা নেগেভ আক্রমণ করেছিলাম| ওখানে করেথীযরা থাকে| আমরা যিহূদা আর নেগেভ অঞ্চল আক্রমণ করেছিলাম| নেগেভে কালেবের লোকরা থাকে| আমরা সিক্লগও পুড়িয়ে দিয়েছিলাম|” 15 দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যারা আমাদের পরিবারগুলিকে নিয়ে নিয়েছে তুমি কি তাদের কাছে আমাদের নিয়ে যাবে?”মিশরীয় লোকটি বলল, “যদি ঈশ্বরের কাছে প্রতিশ্রুতি করো যে তুমি আমায় হত্যা করবে না বা আমাকে আমার মনিবের কাছে ফিরিযে দেবে না, তাহলে আমি তোমাকে সাহায্য করবো|” 16 মিশরীয় লোকটি দায়ূদকে অমালেকীয়দের কাছে পৌঁছে দিল| সেই সময় তারা মাটিতে চারিদিকে ছড়িয়ে গড়াগড়ি দিচ্ছিল, খাওয়াদাওযা ও পান করছিল| পলেষ্টীয়দের দেশ আর যিহূদা থেকে যা লুঠপাট করে এনেছিল সে সব নিয়ে ওরা ফূর্তি করছিল| 17 দায়ূদ তাদের আক্রমণ করে হত্যা করলেন| সূর্য়োদয থেকে পরদিন সন্ধ্য়ে পর্য়ন্ত তারা যুদ্ধ করলো| 400 জন অমালেক যুবক ঝাঁপ দিয়ে, উটে চড়ে পালিয়ে গেল| বাকীরা সকলে নিহত হল| 18 অমালেকীয়রা যা যা নিয়েছিল দায়ূদ তার সব ফিলে পেলেন| তিনি তাঁর দুই স্ত্রীও ফিরে গেলেন| 19 কিছুই খোযা যায় নি| শিশু বৃদ্ধ সকলকেই ফিরে পাওয়া গেল| তারা তাদের সব ছেলে মেয়েদের এবং তাদের দামী জিনিসপত্র সব ফিরে পেল| দায়ূদ সব ফিরিযে নিয়ে এলেন| 20 দায়ূদ সমস্ত মেষপাল ও গো-পাল নিলেন| দাযূদের লোকরা এইসব পশুকে আগে আগে চালাল| দাযূদের লোকরা বলল, “এইসব হচ্ছে দাযূদের পুরস্কার|” 21 বিষোর স্রোতের ধারে যে 200 জন থেকে গিয়েছিল তাদের কাছে দায়ূদ এলেন| এরা খুব ক্লান্ত আর দুর্বল বলে দাযূদের সঙ্গে যেতে পারে নি| তারা দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে দেখা করতে এল| তারা কাছে আসতেই বিষোর স্রোতের ধারের লোকরা অভিবাদন জানাল| 22 কিন্তু দাযূদের লোকদের মধ্যে দুষ্ট লোকও ছিল| তারা ঝামেলা বাধাত| তারা বলল, “এই 200 জন লোক আমাদের সঙ্গে আসে নি| তাই এদের আমরা যা এনেছি তার ভাগ দেব না| এরা শুধু নিজেদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের ফেরত পাবে|” 23 দায়ূদ বললেন, “ভাইসব, এইরকম কাজ করা ঠিক নয়| প্রভু আমাদের কি দিয়েছেন একবার ভেবে দেখো| তিনি আমাদের বিরুদ্ধে আসা শত্রুদের হারিয়ে দিয়েছেন| 24 তোমাদের কথা কেউ শুনবে না| যারা দ্রব্যসামগ্রী আগলেছিল আর যারা যুদ্ধে য়োগ দিয়েছিল সকলেই সমান দাবিদার| প্রত্যেকেই সমান ভাগ পাবে|” 25 দায়ূদ ইস্রায়েলের জন্য এই বিধি ও শাসন স্থির করলেন| এই বিধান আজও চালু আছে| 26 দায়ূদ সিক্লগে এসে পৌঁছালেন| অমালেকীয়দের কাছ থেকে পাওয়া কিছু জিনিসপত্র তাঁর বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন| এরা সব যিহূদার দলপতি| দায়ূদ বললেন, “তোমাদের জন্য কিছু উপহার এনেছি| প্রভুর শত্রুদের কাছ থেকে এইসব আমরা পেয়েছি|” 27 দায়ূদ অমালেকীয়দের কাছ থেকে নেওয়া জিনিসপত্র থেকে কিছু বৈথেল, নেগেভের রামোত্ এবং য়ত্তীরের নেতাদের কাছে পাঠালেন| 28 অরোযের, শিফমোত্, ইষ্টিমোয, 29 রাখল, য়িরহমেলীযদের নগরগুলিতে, কেনীয়দের নগরগুলিতে 30 র্হম্মা, কোর-আশন, অথাক, 31 এবং হিব্রোণ শহরের নেতাদের কাছে দায়ূদ উপহার পাঠালেন| তাছাড়া আর যে যে দেশে দায়ূদ ও তার লোকরা ছিল, সেইসব দেশের নেতাদের কাছেও তিনি উপহার পাঠালেন|
1 ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পলেষ্টীয়রা জিতে গেল| ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে পালিয়ে গেল| গিল্বোয পর্বতের চূড়ায় অনেক ইস্রায়েলীয় মারা গেল| 2 শৌল আর তাঁর পুত্রদের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয়রা একটা দুর্দান্ত যুদ্ধ চালিযেছিল| শৌলের তিন পুত্র য়োনাথন, অবীনাদব আর মল্কী-শূযকে পলেষ্টীয়রা হত্যা করল| 3 যুদ্ধের অবস্থা শৌলের পক্ষে খারাপ থেকে আরও খারাপ হতে লাগল| তীরন্দাজরা তীর ছুঁড়ে শৌলকে গুরুতরভাবে আহত করল| 4 শৌল তাঁর বর্মবহনকারী ভৃত্যকে বললেন, “আমায় তোমার তরবারি দিয়ে মেরে ফেল| তাহলে বিদেশীরা আর আমায় মেরে মজা করতে পারবে না|” কিন্তু ভৃত্য সে কথা শুনলো না| সে বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল| তাই শৌল নিজের তরবারি দিয়ে নিজেকে হত্যা করলেন| 5 ভৃত্যটি যখন দেখল শৌল মারা গেছে, তখন সেও নিজের তরবারি দিয়ে আত্মহত্যা করল| শৌলের সঙ্গে সেও সেখানে পড়ে রইল| 6 এই ভাবে একই দিনে শৌল ও তাঁর তিন পুত্র আর বর্মধারী ভৃত্য একই সঙ্গে মারা গেল| 7 উপত্যকার অন্যদিকে বসবাসকারী ইস্রায়েলীয়রা দেখলো ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা দৌড়ে পালাচ্ছে| তারা দেখল শৌল আর তার তিন পুত্র মারা গেছে| এবার তারাও শহর ছেড়ে পালাল| তারপর পলেষ্টীয়রা এলো এবং ঐ শহরগুলিতে বসবাস করল| 8 পরদিন পলেষ্টীয়রা মৃতদের দেহ থেকে জিনিস লুঠ করতে চলে গেল| গিল্বোয পর্বত চূড়ায় সে তারা শৌল আর তাঁর তিন পুত্রের মৃতদেহ দেখতে পেল| 9 তারা শৌলের মাথাটা কেটে নিল| শৌলের বর্ম নিয়ে নিল| তারা পলেষ্টীয়দের কাছে খবর দিয়ে দিল| তাদের মূর্ত্তিসমূহের মন্দিরেও তারা এই খবর নিয়ে গেল| 10 অষ্টারোত্ মূর্ত্তির মন্দিরে তারা শৌলের বর্ম রেখে দিল| শৌলের দেহ তারা ঝুলিয়ে রাখল বেথ শানের দেওয়ালে| 11 পলেষ্টীয়দের শৌলের প্রতি কৃতকর্মের কথা যাবেশ গিলিয়দের লোকরা জানতে পারলো| 12 সেখানকার সৈন্যরা বৈত্-শানে গেল| তারা সারা রাত ধরে দৃঢ় পদক্ষেপে অগ্রসর হল| সেখানকার দেওয়াল থেকে তারা শৌলের দেহ তুলে নিল| শৌলের পুত্রদের দেহও তারা নামিযে আনল| তারপর তারা দেহগুলো নিয়ে যাবেশে গেল| যাবেশের লোকরা এইসব দেহ দাহ করলো| 13 এদের অস্থিগুলো যাবেশে একটা বিশাল গাছের তলায় তারা কবর দিল| যাবেশের মানুষ সাতদিন উপবাস করে শোক পালন করল|
1 দায়ূদ অমালেকীয়দের পরাজিত করে সিক্লগে ফিরে গেলেন| শৌলের মৃত্যুর ঠিক পরে দায়ূদ সিক্লগে দু’দিন থাকলেন| 2 তৃতীয়দিন একজন তরুণ সৈনিক সিক্লগে এলো| লোকটির জামাকাপড় ছেঁড়া, মাথায় ধূলোবালি ভর্তি|সে দায়ূদের কাছে এসে মাথা নত করে তাঁকেপ্রণাম করলো| 3 দায়ূদ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথা থেকে আসছো?”লোকটি দায়ূদকে উত্তর দিলো, “আমি এইমাত্র ইস্রায়েলীয় শিবির থেকে আসছি|” 4 দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যুদ্ধে কারা জিতেছে বল?”লোকটি উত্তর দিলো, “আমাদের লোক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেছে| অনেক লোক যুদ্ধে মারা গেছে| এমনকি শৌল এবং তার পুত্র য়োনাথনও যুদ্ধে মারা গেছে|” 5 দায়ূদ সৈনিককে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কেমন করে জানলে যে শৌল এবং তার পুত্র য়োনাথন মারা গেছে?” 6 সৈনিক উত্তর দিলো, “আমি তখন গিলবোয পর্বতে ছিলাম| আমি শৌলকে তার বর্শার উপর ভর দিয়ে ঝুঁকে পড়তে দেখেছি| তখন পলেষ্টীয় রথ ও অশ্বারোহী সৈনিকরা ক্রমশঃ শৌলের কাছাকাছি এগিয়ে আসছিলো| 7 শৌল পিছন ফিরে আমাকে দেখতে পেলেন, আমাকে ডাকলেন এবং আমি সাড়া দিলাম| 8 শৌল জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি কে| আমি বলেছিলাম যে আমি একজন অমালেকীয়| 9 তখন শৌল বলেছিলেন, ‘আমাকে মেরে ফেল| আমি প্রচণ্ডভাবে আহত এবং আমি প্রায মরতে চলেছি|’ 10 তিনি এমন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন যে আমি বুঝলাম তিনি আর বাঁচবেন না| সুতরাং আমি তাঁকে হত্যা করলাম| তারপর আমি তার মাথা থেকে রাজমুকুট, বাহু থেকে বালা খুলে নিয়েছিলাম| হে আমার মনিব, সেগুলি নিয়ে এখন আমি আপনার কাছে এসেছি|” 11 তখন দায়ূদ নিজের বস্ত্র ছিঁড়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং দায়ূদের সঙ্গে যারা ছিল, তারাও সেই ভাবে দুঃখ প্রকাশ করল| 12 তারা দুঃখে কাঁদতে লাগল ও সন্ধ্যা পর্য়ন্ত উপবাস করে রইল| তারা শৌল এবং তার পুত্র য়োনাথনের মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করতে লাগল| দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা, প্রভুর যে সমস্ত লোকরা নিহত হয়েছে তাদের জন্য এবং ইস্রায়েলের জন্য কাঁদলেন| কারণ শৌল এবং তাঁর পুত্র য়োনাথন এবং বহু ইস্রায়েলীয় যুদ্ধে মারা গিয়েছিল| 13 তখন দায়ূদ, যে সৈনিক তাকে শৌলের মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছিল, তার সঙ্গে কথা বললেন| দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথা থেকে আসছো?”সৈনিক উত্তর দিল, “আমি এক বিদেশীর ছেলে| আমি একজন অমালেকীয়|” 14 দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভুর অভিষিক্ত রাজাকে হত্যা করতে তুমি ভয় পেলে না কেন?” 15 তখন দায়ূদ সেই অমালেকীয়কে বললেন, “তুমিই তোমার মৃত্যুর জন্য দায়ী| তুমিই বলেছিলে যে তুমি প্রভুর অভিষিক্ত রাজাকে হত্যা করেছ| সুতরাং তোমার নিজের কথাই তোমার অপরাধের প্রমাণ দিচ্ছে|” এরপর দায়ূদ তাঁর এক তরুণ ভৃত্যকে ডেকে এই অমালেকীয়কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন| তখন সেই ইস্রায়েলীয় যুবক সেই অমালেকীয়কে হত্যা করল| 16 17 শৌল ও য়োনাথন সম্পর্কে দায়ূদ একটি শোক গীত গাইলেন| 18 সেই গান যিহূদার অধিবাসীদের শিখিযে দেবার জন্য দায়ূদ তাঁর অনুগামীদের আদেশ দিলেন| এ গান ‘ধনু’ নামে পরিচিত যা যাশের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 19 “হে ইস্রাযেল, তোমার পাহাড়ে তোমার সৌন্দর্য় বিনষ্ট হয়েছিল| হায! সেই বীরদের কেমন করে পতন হল! 20 এ খবর গাতে জানিও না| অস্কিলোনের পথে পথে এ খবর প্রচার করো না| এতে পলেষ্টীয়রা উল্লাস করবে| ঐ সব বিদেশীরাআনন্দিত হবে| 21 গিল্বোয পর্বতে উত্সর্গ ক্ষেত্রগুলিরওপরে যেন কোন বৃষ্টি বা শিশির কণা না পড়ে| সেখানে বীরপুরুষদের ঢালগুলিতে মরচে পড়েছে| শৌলের ঢাল তেল দিয়ে ঘষা হয় নি| 22 য়োনাথনের ধনুক তার শত্রুদের হত্যা করেছে| শৌলের তরবারিও শত্রুদের হত্যা করেছে| য়োনাথন ও শৌল পরাক্রান্ত শত্রু সৈন্যদের রক্তপাত ঘটিযেছে| তাঁরা শক্তিমান লোকদের মেদ মাংস ছিন্নভিন্ন করেছেন| 23 শৌল এবং য়োনাথন একে অপরকে ভালোবাসতেন এবং জীবনভোর একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করেছিলেন| মৃত্যুও তাঁদের আলাদা করতে পারে নি| তাঁদের গতি ঈগলের থেকেও তীব্র ছিলো| তাঁরা সিংহের থেকেও বলবান ছিলেন| 24 হে ইস্রায়েলের কন্যাগণ, শৌলের জন্য বিলাপ কর| শৌল তোমাদের সুন্দর লাল পোষাক দিয়েছেন এবং তা সোনার অলঙ্কারে ঢেকে দিয়েছেন| 25 বীরগণ যুদ্ধে ভূপতিত হলেন| য়োনাথন গিলবোয পর্বতে মৃত্যুবরণ করলেন| 26 য়োনাথন, ভাই আমার, আমি তোমার জন্য শোকাভিভূত| তুমি আমার সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করেছ| আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা একজন নারীর ভালোবাসার থেকেও অনুপম ছিল| 27 বীরগণ যুদ্ধে ভূপতিত হলেন| যুদ্ধের সকল অস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে হারিযে গিয়েছিল|”
1 পরে দায়ূদ প্রভুর কাছ থেকে উপদেশ চাইলেন| দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি যিহূদার শহরগুলির কোন একটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব?”প্রভু দায়ূদকে বললেন, “হ্যাঁ|”দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কোথায যাব?”প্রভু বললেন, “হিব্রোণে|” 2 তখন দায়ূদ এবং তাঁর দুই স্ত্রী হিব্রোণে রওনা হলেন| (তাঁর স্ত্রীরা ছিলেন য়িষ্রিযেলের অহীনোযম এবং কর্ম্মিলের নাবলের বিধবা পত্নী অবীগল|) 3 দায়ূদ তাঁর সঙ্গীগণ এবং তাদের পরিবারকেও সঙ্গে নিলেন| তারা প্রত্যেকে হিব্রোণ এবং নিকটবর্তী শহরগুলিতে বসবাস করতে লাগল| 4 যিহূদার লোকরা হিব্রোণে এসে দায়ূদকে যিহূদার রাজারূপে অভিষিক্ত করল| তারপর তারা দায়ূদকে বলল, “যাবেশ গিলিয়দের লোকরা শৌলকে কবর দিয়েছে|” 5 দায়ূদ যাবেশ গিলিয়দের লোকদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন| বার্তাবাহকরা যাবেশের লোকদের বলল, “প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন কেননা তোমরা তোমাদের গুরু শৌলের ছাইকবর দিয়ে তার প্রতি দয়া দেখিয়েছ| 6 প্রভু তোমাদের প্রতি ন্যাযসঙ্গত আচরণ করবেন এবং সদয হবেন| আমিও তোমাদের প্রতি সদয হব| 7 এখন তোমরা শক্তিশালী ও সাহসী হও| তোমাদের মনিব শৌল নিহত হয়েছেন| কিন্তু যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী আমাকে তাদের রাজারূপে অভিষিক্ত করেছে|” 8 নেরের পুত্র অব্নের শৌলের সৈন্যবাহিনীর সেনাপতি ছিলেন| অব্নের শৌলের পুত্র ঈশ্বোশত্কে মহনযিমে নিয়ে গেলেন এবং 9 তাকে গিলিয়দ, অশূরীয়, য়িষিযেল, ইফ্রয়িম, বিন্যামীন এবং সারা ইস্রায়েলের রাজা করে দিলেন| 10 ঈশ্বোশত্ শৌলের পুত্র ছিলেন| যখন তিনি ইস্রায়েলের শাসনভার নেন, তখন তাঁর বয়স 40 বছর| তিনি ইস্রায়েলে দুবছর রাজত্ব করেছিলেন| কিন্তু যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী দায়ূদকে অনুসরণ করল| 11 দায়ূদ ছিলেন হিব্রোণের রাজা| দায়ূদ যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর ওপর সাত বছর ছ’মাস শাসনকার্য় চালিয়েছিলেন| 12 নেরের পুত্র অব্নের এবং শৌলের পুত্র ইশ্বোশতের কিছু আধিকারিকগণ মহনযিম থেকে গিবিয়োনে গেল| 13 সরূযার পুত্র য়োয়াব এবং দায়ূদের আধিকারিকরাও গিবিয়োনে গেল| গিবিয়োনের এক পুকুরের কাছে তাদের দেখা হল| পুকুরের একদিকে অব্নেরের দল এবং অন্যদিকে য়োয়াবের দল বসল| 14 অব্নের য়োয়াবকে বলল, “আমাদের তরুণ য়োদ্ধারা উঠে দাঁড়াক এবং তাদের মধ্যে একটা লড়াই হয়ে যাক|”য়োয়াব বলল, “নিশ্চয়ই, লড়াই হোক্|” 15 তখন তরুণ য়োদ্ধারা উঠে দাঁড়াল| দুই দেশই, লড়াইয়ের জন্য তাদের কত লোকজন আছে তা গুনে নিল| তারা বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য বারো জনকে বেছে নিলো| অন্যদিকে য়োয়াবের দল দায়ূদের আধিকারিকদের মধ্যে থেকে বারো জনকে বেছে নিল| 16 তাদের প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতি পক্ষের মাথা আঁকড়ে ধরে তাদের তরবারি দিয়ে পাশে ঢুকিয়ে দিল, তাই তারা একসঙ্গে মাটিতে পড়ে গেল| এই জন্য এই জায়গাকে বলা হয় “ছুরিকা ভূমি|” এটা গিবিয়োনের একটা জায়গা| 17 সেই লড়াই একটা ভয়ঙ্কর যুদ্ধের রূপ নিয়েছিল এবং দায়ূদের লোকজন সেদিন অব্নের এবং ইস্রায়েলীয়দের হারিযে দিয়েছিল| 18 সরূযার তিন পুত্র ছিল: য়োয়াব, অবীশয এবং অসাহেল| অসাহেল খুব দ্রুত দৌড়াতে পারত| সে বন্য হরিণের মতই দ্রুতগামী ছিল. 19 অসাহেল সোজা অব্নেরের দিকে দৌড়ে গেল এবং তাঁকে তাড়া করল| 20 অব্নের পিছনে তাকিযে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমিই কি অসাহেল?”অসাহেল বললেন, “হ্যাঁ, আমিই অসাহেল|” 21 অব্নের অসাহেলকে আঘাত করতে চায নি| তাই, অব্নের অসাহেলকে বলল, “আমাকে তাড়া কর না| বরং একজন তরুণ সৈনিককে তাড়া কর| খুব সহজেই তুমি তার বর্মটি তোমার জন্য পেয়ে যেতে পারো|” কিন্তু অসাহেল অবনেরকে তাড়া করা থেকে ক্ষান্ত হল না| 22 অব্নের আবার অসাহেলকে বলল, “দাঁড়াও; না হলে আমি তোমাকে হত্যা করতে বাধ্য হব| তাহলে কেমন করে আমি আবার তোমার ভাই য়োয়াবের মুখের দিকে তাকাবো?” 23 কিন্তু অসাহেল অব্নেরকে তাড়া করা থেকে ক্ষান্ত হল না| তখন অব্নের তার বর্শার গোড়ার দিকটা অসাহেলের পেটে ঢুকিয়ে দিল| বর্শা তার পেটে ঢুকে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গেল এবং সেখানেই অসাহেলের মৃত্যু হল|অসাহেলের দেহ মাটিতে পড়ে রইলো| সেই রাস্তা দিয়ে যারা ছুটে যাচ্ছিল তারা সবাই অসাহেলকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে পড়লো| 24 কিন্তু য়োয়াব এবং অবীশয অব্নেরকে তাড়া করতে লাগল| যখন তারা অম্মা পাহাড়ের কাছে এলো তখন সূর্য় অস্ত যেতে বসেছে| (গিবিয়োন মরুভূমির দিকে যেতে গীহের সামনেই ছিল অম্মা পাহাড়|) 25 পর্বতের চূড়ায়, বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা অব্নেরের চারদিকে একত্রিত হল| 26 অব্নের চিত্কার করে য়োয়াবকে বলল, “আমরা কি চিরদিন লড়াই করে একে অপরকে হত্যা করে যাবো? তুমি খুব ভালো করেই জানো যে এর পরিণাম হবে শুধুই দুঃখ| এই সব লোকদের বল তারা যেন তাদের নিজের ভাইকে তাড়া না করে|” 27 তখন য়োয়াব বলল, “এ কথা বলে তুমি খুব ভালো করলে| যদি তুমি কিছু না বলতে, এই সব লোকরা সকাল পর্য়ন্ত তাদের ভাইকে তাড়া করতে থাকত| ঈশ্বর যেমন আছেন এ কথা যেমন সত্য তেমনি এটাও সত্য|” 28 তখন য়োয়াব একটি শিঙা বাজাল এবং তার লোকরা ইস্রায়েলীয়দের পেছনে তাড়া করা বন্ধ করল| তারা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে আর লড়াই করার চেষ্টাও করল না| 29 অব্নের এবং তার অনুগামীরা সারারাত ধরে যর্দন উপত্যকায হেঁটে যর্দন নদী পার হল এবং পরদিন সারা দিন হেঁটে মহানযিমে উপস্থিত হল| 30 য়োয়াব অব্নেরকে তাড়া করা থেকে বিরত হল ও ফিরে গেল| য়োয়াব তার লোকদের জড়ো করল এবং জানতে পারল যে অসাহেল সহ দায়ূদের 19 জন আধিকারিকরা নিখোঁজ| 31 কিন্তু দায়ূদের আধিকারিকরা, অব্নেরের দল থেকে বিন্যামীনের পরিবারের 360 জনকে হত্যা করেছিল| 32 দায়ূদের আধিকারিকরা অসাহেলকে নিয়ে গিয়ে বৈত্লেহেমে তার পিতার কবরে কবর দিলো|য়োয়াব এবং তার সঙ্গীরা সারারাত ধরে হেঁটে চলল| যখন তারা হিব্রোণে পৌঁছালো তখন সকালের সূর্য় সবে উঠেছে|
1 শৌলের পরিবার ও দায়ূদের পরিবারের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে যুদ্ধ চলছিল| দায়ূদ ক্রমশঃই আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছিলেন এবং শৌলের পরিবার ক্রমশঃই দুর্বল হয়ে পড়েছিল| 2 দায়ূদের এইসব সন্তান হিব্রোণে জন্মগ্রহণ করেছিল| প্রথম সন্তান ছিল অম্নোন| অম্নোনের মা ছিলেন য়িষ্রিযেলের অহীনোযম| 3 দ্বিতীয় সন্তান ছিল কিলাব| কিলাবের মা অবীগল ছিলেন কর্ম্মিলীয নাবলের বিধবা পত্নী| তৃতীয় সন্তানের নাম অবশালোম| অবশালোমের মা ছিলেন গশূর রাজ্যের রাজা তল্মযের কন্যা মাখা| 4 চতুর্থ সন্তান আদোনিয| আদোনিযর মা ছিলেন হগীত| পঞ্চম সন্তান শফটিয| শফটিযের মাযের নাম অবীটল| 5 ষষ্ঠ সন্তানের নাম য়িত্রিযম| য়িত্রিযমের মা ছিলেন দায়ূদের স্ত্রী ইগ্লা| দায়ূদের এই কটি সন্তান হিব্রোণে জন্মেছিলো| 6 শৌল এবং দায়ূদের পরিবারের মধ্যে যখন যুদ্ধ চলছিল তখন শৌলের সৈন্যবাহিনীতে অব্নের ক্রমশঃই শক্তিশালী হয়ে উঠছিল| 7 রিস্পা নামে শৌলের এক দাসী ছিল| রিস্পা ছিল অযার কন্যা| ঈশ্বোশত্ অব্নেরকে বলল, “আমার পিতার দাসীর সঙ্গে তুমি কেন য়ৌন সম্পর্ক করলে?” 8 ঈশ্বোশতের কথা অব্নের ভীষণভাবে রেগে গেলেন| অব্নের বলল, “আমি শৌল এবং তার পরিবারের প্রতি বরাবরই অনুগত| আমি তোমাকে দায়ূদের হাতে তুলে দিই নি| দায়ূদকে তোমার উপর জয়ী হতে দিই নি| যিহূদার অধিকারভুক্ত আমি বিশ্বাসঘাতক নই| কিন্তু এখন তুমি বলছো যে আমি এই অপকর্ম করেছি| 9 আমি প্রতিজ্ঞা করছি ঈশ্বর যা বলেছেন তা নিশ্চিতভাবে ঘটবে| প্রভু বলেছেন শৌলের পরিবার থেকে রাজ্য ছিনিয়ে নিয়ে তিনি দায়ূদকে দেবেন| প্রভু দায়ূদকেই যিহূদা এবং ইস্রায়েলের রাজা করবেন| তিনি দান থেকে বের্-শেবা পর্য়ন্তশাসন করবেন| আমার মনে হয় তা ঘটাতে আমি যদি তত্পর না হই ঈশ্বর আমায় শাস্তি দেবেন|” 10 11 ঈশ্বোশত্ অব্নেরকে আর কিছু বলতে পারলেন না| ঈশ্বোশত্ তাকে খুব ভয় পেত| 12 অব্নের দায়ূদকে বার্তাবাহক পাঠাল| অব্নের বলল, “এই দেশ কার শাসন করা উচিত্ বলে আপনি মনে করেন? আপনি আমার সঙ্গে চুক্তি করুন| আমি আপনাকে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকর শাসক হতে সাহায্য করবো|” 13 দায়ূদ উত্তরে জানালেন, “বেশ! আমি আপনার সঙ্গে চুক্তি করব| কিন্তু আমি আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই; যতক্ষণ পর্য়ন্ত আপনি শৌলের কন্যা মীখলকে আমার কাছে আনতে না পারবেন ততক্ষণ পর্য়ন্ত আমি আপনার সঙ্গে দেখা করব না|” 14 দায়ূদ শৌলের পুত্র ইশ্বোশতের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন| দায়ূদ বললেন, “আমার স্ত্রী মীখলকে ফেরত দিন| সে আমার কাছে স্ত্রী হিসেবে প্রতিশ্রুত| তাকে পাবার জন্য আমি 100 পলেষ্টীয় শিশ্নের দাম দিয়েছি|” 15 তখন ঈশ্বোশত্ সেই লোকটিকে লয়িশের পুত্র পল্টিযেল নামক এক লোকর কাছ থেকে মীখলকে নিয়ে যেতে বলল| 16 মীখলের স্বামী পল্টিযেল মীখলের সঙ্গে গেল| বহুরীমে যাবার সময় পল্টিযেল মীখলের পিছু পিছু যাচ্ছিল এবং কাঁদছিল| কিন্তু অব্নের পল্টিযেলকে বলল, “বাড়ী ফিরে যাও|” তখন পল্টিযেল বাড়ী ফিরে গেল| 17 অব্নের ইস্রায়েলের নেতাদের কাছে এই বার্তা দিল| সে বলল, “দীর্ঘদিন ধরে তোমরা দায়ূদকে তোমাদের রাজা হিসেবে চেয়ে আসছ| 18 এখন তা সম্পাদন কর| প্রভু দায়ূদ সম্পর্কে বলার সময় বললেন, ‘আমি আমার ইস্রায়েলীয় লোকদের পলেষ্টীয় এবং অন্যান্য শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করব| আমি দায়ূদের মাধ্যমে এটা করাবো|”‘ 19 এসব কথা অব্নের দায়ূদকে হিব্রোণে বলেছিল| এসব কথা সে বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের কাছেও বলেছিল| অব্নের যা বলেছিল সেগুলো বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠী এবং ইস্রায়েলের সব লোকদের কাছে ভাল লেগেছিল| 20 তখন অব্নের হিব্রোণে দায়ূদের কাছে চলে এল| অব্নের তার সঙ্গে 20 জন লোক এনেছিল| অব্নের এবং অব্নেরের সঙ্গে যারা এসেছিল তাদের জন্য দায়ূদ একটি ভোজ দিয়েছিলেন| 21 অব্নের দায়ূদকে বলল, “হে আমার মনিব এবে রাজা, আমাকে যেতে দিন এবং সব ইস্রায়েলীয়কে আপনার কাছে আনতে দিন| তারা আপনার সঙ্গে চুক্তি করবে| যেমনটি আপনি চেয়েছিলেন যে আপনি সারা ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করবেন|”তখন দায়ূদ অব্নেরকে যেতে দিলেন| অব্নের শান্তিতে চলে গেলেন| 22 য়োয়াব এবং দায়ূদের আধিকারিকরা যুদ্ধ থেকে ফিরে এল| তারা শত্রুদের কাছ থেকে বহু মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে এনেছিল| দায়ূদ সবেমাত্র অব্নেরকে শান্তিতে পাঠিয়ে দিয়েছেন, তাই অব্নের দায়ূদের সঙ্গে হিব্রোণে ছিলেন না| 23 য়োয়াব তার সৈন্যসামন্ত সহ হিব্রোণে এসে পৌঁছল| সৈন্যরা য়োয়াবকে বলল, “নেরের পুত্র অব্নের রাজা দায়ূদের কাছে এসেছিল| রাজা দায়ূদ অব্নেরকে শান্তিতে যেতে দিয়েছেন|” 24 য়োয়াব রাজাকে বলল, “এ আপনি কি করেছেন?” অব্নের আপনার কাছে এলো আর আপনি তাকে আঘাত না করেই ছেড়ে দিলেন| কেন? 25 আপনি কি জানেন অব্নের নেরের পুত্র? সে আপনার সঙ্গে চালাকি করতে এসেছিল এবং আপনি কি কি করছেন সেই সমস্ত বিষযে সে শিখতে এসেছিল|” 26 য়োয়াব দায়ূদের কাছ থেকে ফিরে গেল এবং সিরা কুযোর কাছে অব্নেরের কাছে বার্তাবাহকদের পাঠালো| বার্তাবাহক অব্নেরকে ফিরিযে নিয়ে এল| দায়ূদ এসবের কিছুই জানতে পারলেন না| 27 অব্নের যখন হিব্রোণে এল, তখন য়োয়াব তার সঙ্গে কথা বলতে চায এই ভাবে তাকে প্রবেশ পথের মাঝখানে একধারে নিয়ে গেল| সেখানে অব্নেরের পেটে ছুরিকাঘাত করল এবং অব্নের মারা গেল| অব্নের য়োয়াবের ভাই অসাহেলকে হত্যা করেছিল তাই য়োয়াব অব্নেরকে হত্যা করল| 28 পরে দায়ূদ এই খবর শুনলেন| দায়ূদ বললেন, “নেরের পুত্র অব্নেরের মৃত্যুর ব্যাপারে আমি এবং আমার রাজ্য একেবারে নির্দোষ| প্রভু তা নিশ্চয়ই জানেন| 29 য়োয়াব এবং তার পরিবার এর জন্য দায়ী এবং এই পরিবারগুলিকেই দোষ দেওয়া হবে| তাদের পরিবারের ওপর বহু সঙ্কট নেমে আসুক| এই পরিবারের লোকরা কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হবে, পঙ্গু হবে, যুদ্ধে মারা যাবে এবং ওদের খাদ্য়াভাব হবে|” 30 য়োয়াব এবং তার ভাই অবীশয অব্নেরকে হত্যা করলো কারণ অব্নের তাদের ভাই অসাহেলকে গিবিয়োনের যুদ্ধে হত্যা করেছিল| 31 য়োয়াব এবং তার লোকদের দায়ূদ বললেন, “তোমাদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেল এবং শোক প্রকাশ পায় এমন জামাকাপড় পর| অব্নেরের জন্য কাঁদ|” তারা অব্নেরকে হিব্রোণে কবর দিল| দায়ূদও অন্ত্য়োষ্টি ক্রিযাতে গেলেন| রাজা দায়ূদ এবং অন্যান্য সব লোক অব্নেরের অন্ত্য়োষ্টিতে কাঁদলেন| 32 33 রাজা দায়ূদ অব্নেরের অন্ত্য়োষ্টি ক্রিযাতে এই শোকগীত গাইলেন:“অবনের কি কযেকজন দুষ্ট অপরাধীদের মত মারা গেল? 34 অব্নের, তোমার হাত বাঁধা ছিল না| তোমার পাযে কোন শিকল ছিল না| না, অব্নের, মন্দ লোকরা তোমাকে হত্যা করেছে|”প্রত্যেকে আবার অব্নেরের জন্য কাঁদল| 35 সারাদিন ধরে লোকরা এসে দায়ূদকে কিছু খাবার জন্য উত্সাহ দিল| কিন্তু দায়ূদ একটা বিশেষ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন| তিনি বললেন, “হে আমার ঈশ্বর, যদি আমি সূর্য় ডোবার আগে রুটি বা অন্য কিছু খাই তবে তুমি আমাকে শাস্তি দিও এবং বহু সমস্যার মধ্যে ফেলো|” 36 এরপর কি ঘটলো তা সব লোকরা দেখল এবং রাজা দায়ূদ যা করেছিলেন তাতে সবাই খুব খুশী হল| 37 যিহূদা এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোক বুঝতে পারলো যে রাজা দায়ূদ নেরের পুত্র অব্নেরকে হত্যার আদেশ দেন নি| 38 রাজা দায়ূদ তাঁর আধিকারিকদের বললেন, “তোমরা কি জানো যে একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা আজ ইস্রায়েলে মারা গেছে| 39 যে দিন আমি রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছি এ ঘটনা ঠিক সেই দিনই ঘটেছে| সরূযার এই সব সন্তান আমাকে বহু অসুবিধায ফেলেছে| আমি আশা করি যে শাস্তি তাদের প্রাপ্য়, প্রভু ওদের তা দেবেন|”
1 শৌলের পুত্র ইশ্বোশত্ শুনলেন যে হিব্রোণে অব্নের মারা গেছেন| ঈশ্বোশত্ এবং তাঁর লোকরা ভীষণ ভয় পেয়ে গেল| 2 দুজন লোক শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের সঙ্গে দেখা করতে গেল| ঐ দুজন লোক সৈন্যবাহিনীর প্রধান ছিল| তারা ছিল বেরোতীয রিম্মোণের পুত্র রেখব এবং বানা| (এরা ছিল বিন্যামীনীয যেহেতু বেরোত শহর বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর ছিল| 3 কিন্তু বেরোতের সব লোক গিত্তযিমে পালিয়ে গিয়েছিল এবং এখনও পর্য়ন্ত তারা সেখানেই বসবাস করছে|) 4 শৌলের পুত্র য়োনাথনের মফীবোশত্ নামে একটি পুত্র ছিল| শৌল এবং য়োনাথন নিহত হয়েছেন এই খবর যখন য়িষ্রিযেল থেকে এল তখন মফীবোশতের বয়স পাঁচ বছর| মফীবোশত্কে যে মহিলা দেখাশোনা করতো এই সংবাদে সে অত্যন্ত ভীত হল এবং শত্রুরা আসছে এই ভেবে সে মফীবোশত্কে নিয়ে পালিয়ে গেল| কিন্তু দৌড়ে পালাবার সময়, সে ছেলেটিকে ফেলে দিল, তাই তার দুটো পা-ই পঙ্গু| 5 রিম্মোণের পুত্ররা রেখব ও বানা বিরোত থেকে দুপুর বেলায ঈশ্বোশতের বাড়ী গিয়েছিল| প্রচণ্ড গরম ছিল বলে ঈশ্বোশত্ বিশ্রাম করছিলেন| 6 রেখব ও বানা এমন ভাবে বাড়ীতে এল যেন তারা কিছু গম নিতে এসেছে| ঈশ্বোশত্ শোযার ঘরে তাঁর বিছানায শুয়েছিলেন| রেখব ও বানা ছুরি বিদ্ধ করে তাঁকে হত্যা করল| তারা তাঁর মাথা কেটে সঙ্গে নিয়ে নিল| এরপর সারারাত তারা যর্দন উপত্যকার মধ্য দিয়ে হাঁটল| 7 8 তারা হিব্রোণে এলো এবং মাথাটি দায়ূদকে দিল|রেখব এবং বানা রাজা দায়ূদকে বলল, “এই যে আপনার শত্রু শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের মাথা| সে আপনাকে হত্যার চেষ্টা করছিল| আপনার জন্য, শৌল এবং তার পরিবারকে প্রভু আজ শাস্তি দিলেন|” 9 কিন্তু দায়ূদ রেখব এবং তার ভাই বানাকে বললেন, “এ কথা জীবিত প্রভুর মতই সত্য যে তিনি সব সমস্যা থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন| 10 এর আগে একবার এক ব্যক্তি ভেবেছিল সে আমার কাছে সুসংবাদ আনবে| সে বলেছিল, ‘দেখুন শৌল মারা গেছে|’ সে ভেবেছিল যে আমার কাছে এই খবর আনার জন্য আমি তাকে পুরস্কার দেব| কিন্তু আমি এই লোকটিকে ধরে ফেলেছিলাম এবং তাকে সিক্লগে হত্যা করি| 11 সেই মত আমি তোমাদের হত্যা করে এই দেশ থেকে সরিয়ে দেব| কেন? কারণ একজন সত্ লোককে তার বাড়ীতে, তার বিছানায ঘুমন্ত অবস্থায়, তোমরা মন্দ লোকরা হত্যা করেছ|” 12 তখন দায়ূদ রেখব ও বানাকে হত্যা করার জন্য তরুণ সেনাদের আদেশ দিলেন| সেনারা রেখব ও বানার হাত পা কেটে নিল এবং হিব্রোণের একটি পুকুরের পাড়ে তাদের দেহ ঝুলিয়ে দিল| তারপর তারা ঈশ্বোশতের মাথাটি নিয়ে হিব্রোণে ঠিক সেখানেই কবর দিল যেখানে অব্নেরকে কবর দেওয়া হয়েছিল|
1 তারপর ইস্রায়েলের সব কটি পরিবারগোষ্ঠী হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এল এবং তারা তাঁকে বলল, “দেখুন, আমরা একই পরিবারভুক্ত| 2 এমন কি শৌল যখন আমাদের রাজা ছিলেন, তখনও যুদ্ধে আপনি আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং আপনিই ইস্রাযেলকে যুদ্ধ থেকে ফিরিযে নিয়ে এসেছেন| এমনকি প্রভু বয়ং আপনাকে বলেছেন ‘তুমিই আমার প্রজা সকলের মেষপালক হবে| তুমিই ইস্রায়েলের শাসনকর্তা হবে|”‘ 3 তাই ইস্রায়েলের নেতারা রাজা দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে হিব্রোণে এলেন| রাজা দায়ূদ প্রভুর সামনে, সেই নেতাদের সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন| তারপর ঐ নেতারা দায়ূদকে ইস্রায়েলের রাজারূপে অভিষিক্ত করলেন| 4 দায়ূদের যখন 30 বছর বয়স তখন তিনি শাসনকার্য় শুরু করেন এবং 40 বছর ধরে তিনি রাজা হিসেবে বহাল ছিলেন| 5 হিব্রোণে তিনি 7 বছর 6 মাস ধরে যিহূদা শাসন করেন এবং জেরুশালেমে থাকার সময় ইস্রায়েল ও যিহূদাকে 33 বছর শাসন করেন| 6 রাজা দায়ূদ এবং তাঁর অনুচররা, জেরুশালেমে বসবাসকারী যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলেন| যিবূষীয়রা দায়ূদকে বলল, “তুমি এই শহরে ঢুকতেই পারবে না|আমাদের অন্ধ ও পঙ্গু লোকরাই তোমাকে আটকে দেবে|” (তারা এই কথা বলেছিল কারণ তারা ভেবেছিল দায়ূদ তাদের শহরে ঢুকতে পারবেন না| 7 কিন্তু দায়ূদ সিযোন দুর্গ দখল করলেন| এই দুর্গটি দায়ূদের শহর হল|) 8 সেইদিন দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের বললেন, “যদি তোমরা যিবুষীয়দের হারাতে চাও তবে জলের সুড়ঙ্গপথ দিয়ে সেই সব ‘পঙ্গু ও অন্ধ’ শত্রুদের কাছে পৌঁছে যাও|”এই জন্যে লোক বলে, “অন্ধ ও পঙ্গুরা মন্দিরে ঢুকতে পারে না|” 9 দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করতে লাগলেন এবং সেই শহরকে “দায়ূদের শহর” বললেন| দায়ূদ মিল্লো নামে একটি অঞ্চল নির্মাণ করলেন| তিনি শহরের মধ্যে আরও অনেক বাড়ী তৈরী করলেন| 10 দায়ূদ ক্রমশঃই শক্তিশালী হয়ে উঠলেন কারণ সর্বশক্তিমান প্রভু তার সঙ্গে ছিলেন| 11 সোরের রাজা হীরম দায়ূদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন| হীরম এরস গাছসমূহ, ছুতোর মিস্ত্রীগণ এবং পাথর দিয়ে বাড়ী তৈরীর মিস্ত্রীও পাঠালেন| তারা দায়ূদের জন্য একটা বাড়ী তৈরী করল| 12 তখন দায়ূদ বুঝতে পারলেন, যে প্রভু সত্যিসত্যিই তাঁকে ইস্রায়েলের রাজা করেছেন এবং তাঁর রাজ্যকে (দায়ূদের রাজ্যকে), তাঁর লোকদের, ইস্রায়েলীয়দের জন্য উন্নীত করেছেন| 13 দায়ূদ হিব্রোণ থেকে জেরুশালেমে এলেন| জেরুশালেমে এসে দায়ূদ আরও স্ত্রী এবং দাসী পেলেন| জেরুশালেমে দায়ূদের আরও সন্তানাদি হল| 14 জেরুশালেমে দায়ূদের যে সব পুত্র জন্মেছিল তাদের নাম: সম্মূয, শোবব, নাথন, শলোমন, 15 যিভর ইলীশূয, নেফগ, যাফিয, 16 ইলিয়াদা, ইলীশামা এবং ইলীফেলট| 17 পলেষ্টীয়রা শুনল যে ইস্রায়েলীয়রা দায়ূদকে তাদের রাজারূপে অভিষিক্ত করেছে| সেইজন্য পলেষ্টীয়রা দায়ূদকে হত্যা করবার জন্য খুঁজে বেড়াতে লাগল| দায়ূদ তা জানতে পেরে জেরুশালেমের দুর্গের মধ্যে চলে গেলেন| 18 পলেষ্টীয়রা এসে রফাযীম উপত্যকায তাঁবু গাড়লো| 19 দায়ূদ প্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব? পলেষ্টীয়দের হারাতে আপনি কি আমায় সাহায্য করবেন?”প্রভু দায়ূদকে উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, পলেষ্টীয়দের হারাতে আমি নিশ্চয়ই তোমাকে সাহায্য করব|” 20 তখন দায়ূদ বাল পরাসীমে গিয়ে সেই জায়গায় পলেষ্টীয়দের পরাজিত করলেন| দায়ূদ বললেন, “প্রভু আমার শত্রুদের ঠিক তেমন ভাবেই ভেদ করলেন যেমন ভাবে বন্যার জল একটি বাঁধের মধ্যে দিয়ে সবলে পথ করে বেরিয়ে যায়|” এই কারণে দায়ূদ এই জায়গার নাম “বাল পরাসীম” রাখলেন| 21 পলেষ্টীয়রা বাল্-পরাসীমে তাদের দেবতাদের মূর্ত্তি ফেলে গিয়েছিল| দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা সেইসব মূর্ত্তি নিয়ে গেলেন| 22 পলেষ্টীয়রা আবার এসে রফাযীম উপত্যকায তাঁবু গেড়ে বসল| 23 দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন| এবারে প্রভু দায়ূদকে বললেন, “ওখানে যেও না| তুমি ওদের সৈন্যবাহিনীর পিছন দিকে যাও| তুমি বালসাম গাছের উল্টো দিক থেকে ওদের আক্রমণ কর| 24 বালসাম গাছগুলোর ওপর থেকে তোমরা পলেষ্টীয়দের যুদ্ধ ক্ষেত্রে যাবার কুচকাওযাজের শব্দ শুনতে পাবে| সেই সময় তোমরা তাড়াতাড়ি করবে, কারণ সেই সময় তোমাদের জন্য পলেষ্টীয়দের পরাজিত করতে প্রভু তোমাদের সামনে সামনে যাবেন|” 25 প্রভু যা যা করার আদেশ দিলেন, দায়ূদ সেইমত করলেন এবং তিনি পলেষ্টীয়দের হারিযে দিলেন| তিনি গেবা থেকে গেষর পর্য়ন্ত পলেষ্টীয়দের তাড়া করতে করতে এবং হত্যা করতে করতে গেলেন|
1 দায়ূদ তার মনোনীত সৈন্যদের আবার ইস্রায়েলে জড় করলেন| তাদের সংখ্যা ছিল 30,000| 2 তারপর দায়ূদ এবং তাঁর সৈন্যরা যিহূদার বালাতে গেলেন| এরপর তারা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুককে যিহূদার বালা থেকে জেরুশালেমে নিয়ে এলেন| লোকরা প্রভুর উপাসনার জন্য পবিত্র সিন্দুকের কাছে যেত| পবিত্র সিন্দুকটি প্রভুর সিংহাসনস্বরূপ| এর মাথায় করূবদূতদের মূর্ত্তিগুলি আছে| প্রভু এই দূতদের মাঝখানে রাজার মত বসেন| 3 দায়ূদের লোকরা পবিত্র সিন্দুকটিকে পাহাড়ের উপরিস্থিত অবীনাদবের বাড়ী থেকে বের করে নিয়ে এল| ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুকটিকে তারা এক নতুন শকটে রাখল| অবীনাদবের দুই পুত্র উষ এবং অহিযো সেই শকট চালিয়েছিল| 4 এই ভাবে তারা পবিত্র সিন্দুক পাহাড়ের ওপরে অবীনাদবের বাড়ী থেকে বের করে নিয়ে এসেছিল| উষ পবিত্র সিন্দুকের সঙ্গে সেই শকটে ছিল এবং অহিযো পবিত্র সিন্দুকের সামনে সামনে হাঁটছিল| 5 দায়ূদ এবং সব ইস্রায়েলীয়, প্রভুর সামনে নাচছিল এবং নানা বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছিল| এদের মধ্যে বীণা, ঢাকঢোল, খঞ্জনী, ঝাঁঝ করতাল এবং দেবদারু কাঠের বাদ্যয়ন্ত্রাদি ছিল| 6 দায়ূদের লোকরা যখন নাখোনের শস্য মাড়াইয়ের উঠানের কাছে এল, তখন গরুগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ল এবং ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক শকট থেকে পড়ে যাবার উপক্রম হল| উষ পবিত্র সিন্দুকটি ধরে ফেলল| 7 কিন্তু প্রভু উষের প্রতি ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাকে হত্যা করলেন|উষ যখন পবিত্র সিন্দুক ছুঁযেছিলো তখন সে পবিত্র সিন্দুকের প্রতি য়থোচিত সম্মান দেখায় নি| ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুকের পাশে উষ মারা গেল| 8 প্রভু উষকে মেরে ফেলেছিলেন বলে দায়ূদ ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| দায়ূদ সেই জায়গার নাম রাখলেন “পেরস উষ|” সেই জায়গাকে আজও পেরস উষ বলা হয়| 9 দায়ূদ সেইদিন প্রভুকে ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন| দায়ূদ বললেন, “এখন আমি কি করে ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক এখানে নিয়ে আসব?” 10 দায়ূদ পবিত্র সিন্দুকটিকে জেরুশালেমে নিয়ে গেলেন না| দায়ূদ পবিত্র সিন্দুকটিকে গাত থেকে ওবেদ ইদোমের বাড়ীতে রাখলেন| দায়ূদ পবিত্র সিন্দুককে গাতীয ওবেদ ইদোমের বাড়ীতে নিয়ে এলেন| 11 ওবেদ ইদোমের বাড়ীতে প্রভুর পবিত্র সিন্দুক তিন মাস ছিল| প্রভু ওবেদ ইদোম এবং তার পরিবারের সকলকে আশীর্বাদ করলেন| 12 পরে লোকরা দায়ূদকে বলল, “প্রভু ওবেদ ইদোমের পরিবার এবং তার সব কিছুকেই আশীর্বাদধন্য করেছেন| কারণ পবিত্র সিন্দুকটি তার বাড়ীতে ছিল|” তখন দায়ূদ সেখানে গিয়ে ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে এলেন| সেই দিন দায়ূদ প্রচণ্ড আনন্দিত ও উত্তেজিত ছিলেন| 13 যারা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তারা ছ-পা এগিয়ে গিয়ে থেমে গেল, তখন দায়ূদ একটি ষাঁড় ও স্বাস্থ্য়বান বাছুরকে বলি দিলেন| 14 দায়ূদ প্রভুর সামনে তাঁর সর্বশক্তি দিয়ে নাচছিলেন| তিনি একটি রেশমের এফোদ পরেছিলেন| 15 দায়ূদ এবং সব ইস্রায়েলীয় সেদিন আনন্দে উত্তেজিত ছিলেন| তারা চিত্কার করতে করতে এবং শিঙা বাজাতে বাজাতে প্রভুর পবিত্র সিন্দুক শহরে এনেছিল| 16 শৌলের কন্যা মীখল জানালা দিয়ে তা দেখছিলেন| যখন প্রভুর পবিত্র সিন্দুক শহরে আনা হচ্ছিল তখন দায়ূদ প্রভুর সামনে লাফাচ্ছিলেন ও নাচছিলেন| তা দেখে মীখল দায়ূদের প্রতি বিরক্ত হলেন| তিনি ভাবলেন দায়ূদ বোকার মত আচরণ করছেন| 17 পবিত্র সিন্দুকের জন্য দায়ূদ একটা তাঁবু ফেললেন| ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর পবিত্র সিন্দুককে তাঁবুর মধ্যে রাখল| তারপর দায়ূদ প্রভুর সামনে হোমবলি এবং মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন করলেন| 18 হোমবলি এবং মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন শেষ করে দায়ূদ সকলকে সর্বশক্তিমান প্রভুর নামে আশীর্বাদ করলেন| 19 তারপর তিনি ইস্রায়েলের প্রত্যেক মহিলা এবং পুরুষকে একটা গোটা রুটি, কিস্মিসের পিঠে এবং খেজুর পিঠে বিতরণ করলেন| তারপর সকলে বাড়ী ফিরে গেল| 20 এরপর দায়ূদ বাড়ীর সকলকে আশীর্বাদ করতে গেলেন| শৌলের কন্যা মীখল তাঁর সামনে বেরিয়ে এলেন| মীখল বললেন, “ইস্রায়েলের রাজা আজ নিজের প্রতি য়থোচিত সম্মান দেখান নি| আপনি আপনার দাসীদের সামনেই নিজের পোশাক খুলে ফেলেছেন| আপনি সেই বোকাদের মত আচরণ করলেন যারা নির্লজ্জভাবে নিজের পোশাক খুলে ফেলে|” 21 তখন দায়ূদ মীখলকে বললেন, “প্রভু বয়ং আমাকে মনোনীত করেছেন, তোমার পিতাকে বা তাঁর পরিবারের কোন ব্যক্তিকে নয়| প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের জন্য আমাকে নেতারূপে মনোনীত করেছেন| তাই আমি তাঁর সামনে নাচ করব এবং উত্সব পালন করব| 22 আমি এমন কাজও করব যা আরও বিড়ম্বনাদাযক| হতে পারে তুমি আমায় সম্মান করবে না| কিন্তু যে মেয়েদের কথা তুমি বলছ, তারা আমার সম্পর্কে গর্বিত|” 23 শৌলের কন্যা মীখলের কোন সন্তান ছিল না| তিনি নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেছেন|
1 রাজা দায়ূদ নতুন প্রাসাদে স্থানান্তরিত হবার পর, প্রভু তাঁকে তাঁর সব শত্রুর থেকে মুক্তি দিলেন| 2 রাজা দায়ূদ ভাববাদী নাথনকে বললেন, “দেখুন, আমি কাঠের একটা সুদৃশ্য ঘরে বাস করি, আর ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক একটা তাঁবুর মধ্যে পড়ে রযেছে| আমরা পবিত্র সিন্দুকটির জন্য একটা সুন্দর মন্দির নির্মাণ করব|” 3 নাথন রাজা দায়ূদকে বললেন, “আপনার যেমন মনে হয় তেমন করুন| প্রভু সর্বদা আপনার সঙ্গে থাকবেন|” 4 কিন্তু সেই রাতে, নাথন প্রভুর কাছ থেকে বার্তা পেলেন| 5 প্রভু বললেন, “যাও| আমার দাস দায়ূদকে বল, ‘প্রভু বলেছেন; তুমি আমার থাকার জন্য মন্দির তৈরী করবার লোক নও| 6 ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে আনার সময় আমি মন্দিরে ছিলাম না| না, আমি তাঁবুতে ঘুরেছি| তাঁবুকেই আমি গৃহ হিসাবে ব্যবহার করেছি| 7 আমি আমার থাকার জন্য, ইস্রায়েলের কোন পরিবারগোষ্ঠীকেই এরস কাঠের সুদৃশ্য ঘর তৈরী করতে বলি নি|’ 8 “তুমি অবশ্যই আমার দাস দায়ূদকে বলবে: ‘সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন: যখন তুমি চারণভূমিতে মেষদের দেখাশুনা করছিলে তখন আমি তোমায মনোনীত করেছি| সেখান থেকে তুলে এনে, আমি তোমাকে আমার সন্তান ইস্রায়েলীয়দের রাজা করেছি| 9 যেখানে যেখানে তুমি গিয়েছিলে, আমি সবসময় তোমার সঙ্গে ছিলাম| তোমার জন্য আমি তোমার শত্রুদের পরাজিত করেছি| আমি তোমাকে পৃথিবীর বিখ্যাত লোকদের একজন তৈরী করব| 10 আমি আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের জন্য একটা জায়গা বেছে নিয়েছি| আমি ইস্রায়েলীয়দের প্রতিষ্ঠিত করেছি-আমি তাদের থাকার জন্য একটি জায়গা দিয়েছি| আমি সেরকম করেছি যাতে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় তাদের ঘুরতে না হয়| অতীতে ইস্রায়েলীয়দের পথ দেখানোর জন্য আমি বিচারকদের পাঠিয়েছিলাম| কিন্তু মন্দ লোকরা তাদের বেশ অসুবিধায ফেলেছিল| এখন আর তা হবে না| আমি তোমার সব শত্রু থেকে তোমাকে শান্তি দিলাম| আমি শপথ করছি, তোমার পরিবারকে আমি রাজার পরিবারে পরিণত করব| 11 12 “তোমার আযু শেষ হলে যখন তুমি মারা যাবে, তখন তোমরা পূর্বপুরুষদের মধ্যে তোমাকে কবর দেওয়া হবে| তোমার একটি পুত্রকে আমি রাজারূপে নিযুক্ত করব এবং তার রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করে দেব| 13 সে আমার নামে একটা মন্দির তৈরী করবে এবং আমি তার রাজ্যকে চিরদিনের জন্য শক্তিশালী করব| 14 সে আমার ‘পুত্র’, এবং আমি তার ‘পিতা’ হব|যখন সে পাপ করবে আমি অন্য লোকর মাধ্যমে তাকে শাস্তি দেব| তারা আমার চাবুক হবে| 15 কিন্তু সে আমার ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হবে না| আমি তার প্রতি সর্বদা দয়াময থাকব| শৌলের থেকে আমি আমার প্রেম ও দয়া তুলে নিয়েছি| যখন আমি তোমার দিকে ফিরলাম, তখন আমি শৌলকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি| তোমার পরিবারের প্রতি আমি তা করবো না| 16 তোমার রাজপরিবার চিরকাল থাকবে| তোমার জন্য তোমার রাজত্ব চিরস্থায়ী হবে| তোমার সিংহাসন চিরদিন অটুট থাকবে|” 17 নাথন দায়ূদকে এই দর্শনের কথা বললেন| ঈশ্বর যা যা বলেছেন দায়ূদকে তিনি সবই বললেন| 18 তখন দায়ূদ প্রভুর সামনে গিয়ে বসলেন এবং বললেন, “প্রভু আমার মনিব, কেন আমি আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ? কেনই বা আমার পরিবার এত গুরুত্বপূর্ণ? কেন আপনি আমাকে এত গুরুত্বপূর্ণ করলেন? 19 আমি আপনার দাস ছাড়া কিছুই নই| আপনি আমার প্রতি সদয ছিলেন| কিন্তু আমার ভবিষ্যত্ পরিবারের সম্পর্কেও আপনি এই দয়ার কথাগুলি বলেছেন| প্রভু আমার প্রভু, এটাতো মানুষের বিধি নয়, তাই নয় কি? 20 আমি কিভাবে আপনার সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাব? প্রভু আমার প্রভু আপনি জানেন আমি একজন দাস| 21 এই সব বিস্মযকর জিনিস আপনি করবেন কারণ আপনি বলেছেন আপনি তা করবেন, কারণ আপনি তা করতে চান| এবং আপনি স্থির করেছেন এই সব বিষয আপনি আমাকে জানাবেন| 22 প্রভু, আমার প্রভু এইসব কারণে আপনি এত মহান! আপনার মত আর কেউ নেই| আপনি ছাড়া আর কোন ঈশ্বর নেই| আমরা তা জানি কারণ যে সব কাজ আপনি করেছেন, তা আমরা নিজেরাই শুনেছি| 23 “পৃথিবীতে আপনার লোক, ইস্রায়েলীয়দের মত অন্য কোন জাতি নেই| তারা বিশেষ লোক| তারা ক্রীতদাস ছিল| আপনি তাদের মিশর থেকে নিয়ে এসে মুক্ত করেছেন| আপনি তাদের আপনার সন্তান করে নিয়েছেন| আপনি ইস্রায়েলীয়দের জন্য অনেক বিস্মযকর এবং মহত্ কাজ করেছেন| আপনার ভূখণ্ডের জন্য আপনি অনেক বিস্মযকর কাজ করেছেন| 24 ইস্রায়েলের লোকদের আপনি চিরদিনের জন্য আপনার খুব কাছের সন্তান করে নিয়েছেন| হে প্রভু আপনি তাদের ঈশ্বর হয়েছেন| 25 “প্রভু ঈশ্বর, এখন আপনি আপনার দাস, আমার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য কিছু করার প্রতিজ্ঞা করেছেন| আপনি যা প্রতিজ্ঞা করেছেন এখন তা পালন করুন| আমার পরিবারকে চিরদিনের জন্য রাজপরিবার বানিয়ে দিন| 26 তারপর আপনার নাম চিরদিনের জন্য সম্মানিত হবে| লোকরা বলবে, “সর্বশক্তিমান প্রভু ঈশ্বর ইস্রাযেল শাসন করেছেন| আপনার দাস দায়ূদের পরিবার আপনার সেবায অব্যাহতভাবে শক্তিশালী থাকুক|’ 27 “হে সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আপনি আমার কাছে অনেক কিছু প্রকাশ করেছেন| আপনি বলেছেন, ‘আমি তোমার পরিবারকে মহান করব|’ সেইজন্য আমি, আপনার দাস, আপনার কাছে এই প্রার্থনা জানাতে মনস্থির করেছি| 28 প্রভু, আমার সদাপ্রভু, আপনিই ঈশ্বর| আপনি যা বলেন তা আমি বিশ্বাস করি| আপনি এও বলেছেন যে এইসব ভালো জিনিসগুলি আপনার এই দাসের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হবে| 29 এখন আমার পরিবারকে আশীর্বাদ করুন, তাদের আপনার সামনে এসে দাঁড়াতে দিন| এবং চিরদিন আপনার সেবা করার সুয়োগ করে দিন| প্রভু আমার, আপনি নিজের মুখেই এসব কথা বলেছেন| আপনি আমার পরিবারকে অনন্তকালীন শুভেচ্ছা দিয়ে আশীর্বাদ করেছেন|”
1 পরে, দায়ূদ যুদ্ধে পলেষ্টীয়দের পরাজিত করলেন| পলেষ্টীয়দের রাজধানী শহরের অধীনে বহু জমি জায়গা ছিল| দায়ূদ সেইসব জমিজায়গা নিজের অধীনে আনলেন| 2 দায়ূদ মোয়াবীয় লোকদেরও পরাজিত করলেন| সেই সময় তিনি তাদের মাটিতে শুয়ে পড়তে বাধা করেন| তারপর তিনি দড়ির সাহায্যে তাদের সারিবদ্ধভাবে আলাদা করেন| দুটি সারির লোকদের হত্যা করা হয়| কিন্তু তৃতীয় সারির লোকদের বাঁচতে দেওয়া হয়| এই ভাবে মোয়াবীয়রা দায়ূদের দাসে পরিণত হল| তারা তাঁকে নৈবেদ্য দিল| 3 সোবার রাজা রহোবের পুত্রের নাম ছিল হদদেষর| যখন দায়ূদ ফরাত্ নদীর নিকটবর্তী অঞ্চল দখল করতে গেলেন তখন তিনি হদদেষরকে পরাজিত করলেন| 4 দায়ূদ হদদেষরের কাছ থেকে 1,700 অশ্বারোহী সৈন্য এবং 20,000 পদাতিক সৈন্য ছিনিয়ে নিলেন| দায়ূদ 100টি রথ ছাড়া, বাকী সমস্ত রথগুলি নষ্ট করে দিলেন| 5 সোবার রাজা হদদেষরকে সাহায্য করার জন্য দম্মেশকের অরামীয়রা এল| কিন্তু দায়ূদ 22,000 অরামীয়কে পরাজিত করলেন| 6 তারপর দায়ূদ দম্মেশকের অরামে কিছু সৈন্যকে রেখে দিলেন| অরামীয়রা দায়ূদের দাসে পরিণত হল এবং তার জন্য উপঢৌকন নিয়ে এল| দায়ূদ যে দিকে গেলেন, প্রভু সে দিকেই তাঁকে জয়ী করলেন| 7 হদদেষরের দাসদের কাছে যে সব সোনার ঢাল ছিল, দায়ূদ সেগুলি নিয়ে নিলেন| সেই ঢালগুলি নিয়ে দায়ূদ জেরুশালেমে এলেন| 8 এছাড়াও দায়ূদ, বেটহ ও বেরোথা শহর থেকে বহু তামার জিনিসপত্র এনেছিলেন| (বেটহ এবং বেরোথা ছিল হদদেষরের অধীনস্থ দুটি নগরী|) 9 হমাতের রাজা তযি খবর পেলেন যে দায়ূদ হদদেষরের সৈন্যদলকে পরাজিত করেছেন| 10 তখন তযি নিজের পুত্র য়োরামকে দায়ূদের কাছে পাঠালেন| হদদেষরের বিরুদ্ধে দায়ূদ যুদ্ধ করেছেন এবং তাদের পরাজিত করেছেন বলে য়োরাম দায়ূদকে অভিনন্দন জানালেন এবং আশীর্বাদ করলেন| (এর আগে হদদেষর তোযির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল|) য়োরাম রূপো, সোনা এবং তামার তৈরী জিনিসপত্র সঙ্গে করে এনেছিলেন| 11 দায়ূদ সেই সব জিনিসপত্র গ্রহণ করলেন এবং সেগুলি প্রভুর উদ্দেশ্যে নিবেদন করলেন| প্রভুকে উত্সর্গ করা অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে তিনি সেই জিনিসগুলি রেখে দিলেন| তিনি যে সব জাতিকে পরাজিত করেছিলেন, সেই সব জাতির কাছ থেকে তিনি ঐ সব জিনিসপত্র এনেছিলেন| 12 অরাম, মোযাব, অম্মোন, পলেষ্টীয় এবং অমালেক এইসব জাতিকে দায়ূদ পরাজিত করেছিলেন| এছাড়াও তিনি সোবার রাজা, রহোবের পুত্র হদদেষরকে পরাজিত করেছিলেন| 13 দায়ূদ 18,000 অরামীয়কে লবণ উপত্যকায পরাজিত করেন| যখন তিনি বাড়ী ফিরে এলেন তখন তিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন| 14 দায়ূদ কযেক দল সৈন্যকে ইদোমে রাখলেন| ইদোমের সব লোকরা দায়ূদের দাস হয়ে গেল| দায়ূদ যেখানে যেখানে গেলেন, সেখানেই প্রভু তাকে জয়ী হতে সাহায্য করলেন| 15 দায়ূদ সমগ্র ইস্রায়েলের ওপর শাসন করেছিলেন| তিনি তাঁর লোকদের জন্য ভাল এবং ন্যায্য সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন| 16 সরূযার পুত্র য়োয়াব সেনাপ্রধান হয়েছিল| অহীলূদের পুত্র যিহোশাফট ছিলেন ঐতিহাসিক| 17 অহীটুবের পুত্র সাদোক এবং অবীযাথরের পুত্র অহীমেলক ছিলেন যাজকগণ| সরায ছিলেন সবিচ| 18 যিহোয়াদার পুত্র বনায করেথীয এবং পলেথীযদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন| আর দায়ূদের দুই পুত্র ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ নেতা|
1 দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “শৌলের পরিবারের কোন লোক কি এখনও রযে গেছে? আমি তার প্রতি দয়া দেখাতে চাই| এটা আমি য়োনাথনের জন্য করব|” 2 সীবঃ নামে শৌলের পরিবারের এক দাস ছিল| দায়ূদের দাস সীবঃকে দায়ূদের কাছে নিয়ে এল| রাজা দায়ূদ জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কি সীবঃ?”সীবঃ উত্তর দিল, “হ্যাঁ, আমি আপনার দাস সীবঃ|” 3 রাজা বললেন, “শৌলের পরিবারের কোন লোক কি বেঁচে আছে? আমি তার প্রতি ঈশ্বরের দয়া দেখাতে চাই|”সীবঃ রাজা দায়ূদকে বললেন, “য়োনাথনের একজন পুত্র এখনও বেঁচে আছে| তার দু পা-ই পঙ্গু|” 4 রাজা সীবঃকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সেই ছেলেটি কোথায আছে?”সীবঃ উত্তর দিল, “সে লো-দবারে, অম্মীযেলের পুত্র মাখীরের বাড়ীতে আছে| 5 তখন রাজা দায়ূদ তাঁর কযেকজন আধিকারিককে লো-দবারে অম্মীযেলের পুত্র মাখীরের বাড়ীতে পাঠালেন, য়োনাথনের পুত্রকে নিয়ে আসার জন্য| 6 য়োনাথনের পুত্র মফীবোশত্ দায়ূদের কাছে এলো এবং মাটিতে মাথা নত করে প্রণাম করল|দায়ূদ জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কি মফীবোশত্?”মফীবোশত্ উত্তর দিল, “হ্যাঁ, আমি আপনার দাস মফীবোশত্|” 7 দায়ূদ মফীবোশতকে বলল, “ভয় পেও না| আমি তোমার প্রতি সদয হব| আমি তোমার পিতা য়োনাথনের জন্যই এটা করব| আমি তোমার পিতামহ শৌলের সব জমি তোমাকে ফিরিযে দেব| তুমি সবসমযই আমার সঙ্গে একাসনে বসে আহার করতে পারবে|” 8 মফীবোশত্ পুনরায দায়ূদকে প্রণাম করল| মফীবোশত্ বলল, “একটা মরা কুকুরের থেকে আমি কোন অংশে ভাল নই, কিন্তু আপনি আমার প্রতি অত্যন্ত সদয হয়েছেন|” 9 তখন রাজা দায়ূদ শৌলের দাস সীবঃকে ডাকলেন| দায়ূদ সীবঃকে বললেন, “আমি তোমার মনিবের নাতি মফীবোশতকে শৌলের পরিবারের যা কিছু আমার কাছে ছিল সব ফিরিযে দিয়েছি| 10 মফীবোশতের জন্য তুমি সেই জমি চাষ করবে| মফীবোশতের জন্য তুমি এবং তোমার পুত্ররা এটা করবে| তোমরা ফসল ফলাবে| তাহলে তোমার মনিবের নাতি মফীবোশতের অন্নের জন্য প্রচুর খাদ্যশস্য হবে| কিন্তু তোমার মনিবের নাতি মফীবোশত্ সবসমযেই আমার সঙ্গে একাসনে বসে আহার করতে পারবে|”সীবঃ এর 15 জন ছেলে এবং 20 জন দাস ছিল| 11 সীবঃ উত্তর দিল, “আমি আপনার দাস| আমার মনিব যা যা আদেশ করেন আমি তাই তাই করব|”মফীবোশত্ দায়ূদের সঙ্গে একাসনে বসে, রাজার একজন ছেলের মতই আহার করল| 12 মীখা নামে মফীবোশতের একটা কিশোর ছেলে ছিল| সীবঃর পরিবারের প্রত্যেকে মফীবোশতের দাস হয়ে গেল| 13 মফীবোশতের দু পা-ই পঙ্গু ছিল| মফীবোশত্ জেরুশালেমে থাকত| প্রত্যেকদিন মফীবোশত্ রাজার সঙ্গে একাসনে আহার করত|
1 পরে অম্মোনীয়দের রাজা নাহশ মারা গেলেন| তাঁর পুত্র হানূন, তারপরে নতুন রাজা হলেন| 2 দায়ূদ বললেন, “নাহশ আমার প্রতি সদয ছিলেন| আমিও তার পুত্র হানূনের প্রতি সদয হব|” অতএব দায়ূদ হানূনের পিতার মৃত্যু সম্পর্কে সান্ত্বনা জানিয়ে তাঁর আধিকারিকদের পাঠালেন|তাই দায়ূদের আধিকারিকরা অম্মোনীয়দের রাজ্যে চলে গেল| 3 কিন্তু অম্মোনীয়দের নেতারা তাদের মনিব হানূনকে বলল, “আপনি কি মনে করেন কযেকজন লোক পাঠিয়ে দায়ূদ আপনার পিতার প্রতি সম্মান দেখাতে ও আপনাকে সান্ত্বনা দিতে চান? না! দায়ূদ এই লোকগুলোকে পাঠিয়েছেন আপনার শহর সম্পর্কে গোপনে জেনে যেতে ও খোঁজ খবর নিতে| তারা আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফন্দি আঁছে|” 4 তখন হানূন দায়ূদের লোকদের ধরে তাদের অর্ধেক দাড়ি কামিযে দিল এবং তাদের জামাকাপড় পাছা পর্য়ন্ত কেটে দিল| তারপর তাদের পাঠিয়ে দিল| 5 লোকরা যারা দায়ূদকে এই খবর দিল, তিনি সেই আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বার্তাবাহক পাঠালেন| তিনি এটা করেছিলেন কারণ সেই লোকগুলি খুবই লজ্জিত হয়েছিল| রাজা দায়ূদ বললেন, “যতদিন না তোমাদের দাড়ি গজায, ততদিন য়িরীহোতে অপেক্ষা কর, তারপর জেরুশালেমে ফিরে এসো|” 6 অম্মোনীয়রা দেখল তারা দায়ূদের শত্রুতে পরিণত হয়েছে| তখন অম্মোনীয়রা বৈত্-রহোব এবং সোবা থেকে অরামীয়দের ভাড়া করে নিয়ে এল| তাদের মধ্যে মোট 20,000 পদাতিক সৈন্য ছিল| এছাড়া অম্মোনীযরা 1000 লোক সহ মাখার রাজা এবং টৌব থেকে 12,000 লোককে ভাড়া করেছিল| 7 দায়ূদ এই সবই শুনলেন| তাই তিনি য়োয়াব এবং শক্তিশালী লোকজন সহ গোটা সৈন্যবাহিনীকে পাঠালেন| 8 অম্মোনীয়রা বেরিয়ে এল এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হল| তারা শহরের প্রবেশদ্বারের কাছে দাঁড়িয়েছিল| সোব ও রহোবের অরামীয় সৈন্যরা এবং টোব ও মাখার সৈন্যরা শহরের বাইরের মাঠে সমবেত হল| 9 য়োয়াব দেখলেন তাঁর সামনে পিছনে শত্রু| তখন য়োয়াব শ্রেষ্ঠ ইস্রায়েলীয়দের বেছে নিয়ে, তাদের অরামীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিযে দিলেন| 10 অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি তাঁর আর এক ভাই অবীশযের উপর দায়িত্ব দিলেন| 11 য়োয়াব অবীশযকে বললেন, “যদি অরামীয়রা আমাদের থেকে বেশী শক্তিশালী বলে মনে হয়, তুমি আমাকে সাহায্য করবে| যদি অরামীয়রা তোমার কাছে বেশী শক্তিশালী হয়ে ওঠে - আমি এসে তোমাকে সাহায্য করব| 12 এসো, আমরা শক্তিশালী হই এবং সাহসিকতার সঙ্গে আমাদের লোকদের জন্য এবং আমাদের ঈশ্বরের শহরগুলির জন্য লড়াই করি| প্রভু যা সঠিক বিবেচনা করেন, তাই করবেন|” 13 তারপর য়োয়াব এবং তাঁর লোকরা অরামীয়দের আক্রমণ করলেন| অরামীয়রা য়োয়াব এবং তাঁর লোকদের কাছ থেকে পালিয়ে গেল| 14 অম্মোনীয়রা দেখল অরামীয়রা দৌড়ে পালাচ্ছে, তখন তারাও অবীশযের থেকে দৌড়ে পালালো এবং তাদের শহরে ফিরে গেল|তাই য়োয়াব, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অম্মোনীয়দের সঙ্গে ফিরে এলেন এবং জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 15 অরামীয়রা দেখলো ইস্রায়েলীয়রা তাদের পরাজিত করেছে| তখন তারা একসঙ্গে জমায়েত হয়ে একটা সৈন্যবাহিনী গড়ে তুলল| 16 ফরাত্ নদীর অপর পারে যে সব অরামীয় বাস করত, তাদের আনবার জন্য হদদেষর তার বার্তাবাহকদের পাঠাল| সেই অরামীয়রা হেলমে এলো| তাদের নেতা ছিল শোবক, হদদেষরের সৈন্যবাহিনীর সেনাপতি| 17 দায়ূদ সব শুনলেন| তিনি সব ইস্রায়েলীয়দের জড় করলেন| তারা যর্দন নদী পেরিযে হেলমে গিয়ে হাজির হল|তখন অরামীয়রা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল এবং আক্রমণ করল| 18 কিন্তু যুদ্ধে অরামীয়রা পরাজিত হল এবং অরামীয়রা ইস্রায়েলীয়দের থেকে দূরে পালিয়ে গেল| দায়ূদ 700 রথচালক, 40,000 অশ্বারোহী সৈন্যকে হত্যা করলেন| দায়ূদ অরামীয় সেনাপতি শোবককেও হত্যা করলেন| 19 হদদেষরের অধীনস্থ রাজারা যখন দেখল, ইস্রায়েলীয়রা তাদের পরাজিত করেছে তখন তারা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করল এবং তাদের দাসে পরিণত হল| অরামীয়রা অম্মোনীয়দের আবার সাহায্য করতে ভয় পেল|
1 বসন্তের সময়, যখন রাজারা যুদ্ধে যান, তখন দায়ূদ য়োয়াব, তাঁর আধিকারিকদের এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের অম্মোনীযদের ধ্বংস করতে পাঠালেন| য়োয়াবের সৈন্যরা অম্মোনদের রাজধানী শহর রব্বাও আক্রমণ করল|কিন্তু দায়ূদ জেরুশালেমেই রইলেন| 2 সন্ধ্যায, তিনি বিছানা ছেড়ে উঠলেন এবং রাজবাড়ীর ছাদে পায়চারি করতে লাগলেন| দায়ূদ যখন ছাদে পায়চারি করছিলেন, তখন তিনি এক মহিলাকে স্নান করতে দেখলেন| সেই মহিলা ছিল পরমা সুন্দরী| 3 দায়ূদ তাঁর আধিকারিককে ঐ মহিলাটির সম্বন্ধে খোঁজ নিতে পাঠালেন| এক আধিকারিক উত্তর দিল, “মেয়েটি ইলিয়ামের কন্যা বত্শেবা| সে হিত্তীয় ঊরিযের স্ত্রী|” 4 দায়ূদ লোক পাঠিয়ে বত্শেবাকে তাঁর কাছে আনলেন| যখন বত্শেবা দায়ূদের কাছে এল, দায়ূদ তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলেন| বত্শেবা স্নান করে বাড়ী ফিরে গেল| 5 বত্শেবা গর্ভবতী হল| সে দায়ূদকে জানালো, “আমি গর্ভবতী|” 6 দায়ূদ য়োয়াবের কাছে খবর পাঠালেন, “হিত্তীয় ঊরিযকে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও|”য়োয়াব ঊরিযকে দায়ূদের কাছে পাঠিয়ে দিল| 7 ঊরিয দায়ূদের কাছে এল| দায়ূদ ঊরিযকে জিজ্ঞাসা করলেন, “য়োয়াব কেমন আছে| সৈনিকরা কেমন আছে এবং যুদ্ধ কেমন হল ইত্যাদি| 8 তারপর দায়ূদ ঊরিযকে বললেন, “বাড়ী গিয়ে বিশ্রাম কর|”ঊরিয রাজার বাড়ী থেকে চলে গেল| রাজা (দায়ূদ) ঊরিযের জন্য উপহার পাঠালেন| 9 কিন্তু ঊরিয বাড়ী গেল না| ঊরিয রাজবাড়ীর দরজার সামনে ঘুমিযে পড়লো| রাজার ভৃত্যের মতই সে সেখানে ঘুমালো| 10 এক দাস দায়ূদকে খবর দিল, “ঊরিয বাড়ী যায় নি|”দায়ূদ ঊরিযকে বললেন, “তুমি দীর্ঘ সফর থেকে ফিরে এসেছ| কেন তুমি বাড়ীতে গেলে না?” 11 ঊরিয দায়ূদকে বলল, “পবিত্র সিন্দুকটি এবং ইস্রাযেল ও যিহূদার সৈন্যরা তাঁবুগুলিতে রযেছে| আমার মনিব য়োয়াব এবং আমার মনিবের (রাজা দায়ূদ) আধিকারিকরা শিবির গেড়ে মাঠে তাঁবু ফেলেছেন| সুতরাং আমার পক্ষে বাড়ী গিয়ে পান আহার করে স্ত্রীর সঙ্গে শয়ন করা ঠিক নয়|” 12 দায়ূদ ঊরিযকে বললেন, “আজকের দিনটা এখানে থেকে যাও| কাল আমি তোমাকে যুদ্ধে ফেরত্ পাঠাব|” সেই দিন ঊরিয জেরুশালেমে থেকে গেল| পরদিন সকাল পর্য়ন্ত সে জেরুশালেমে থাকল| 13 দায়ূদ ঊরিযকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠালেন| ঊরিয দায়ূদের সঙ্গে পানাহার করল| দায়ূদ ঊরিযকে দ্রাক্ষারস পান করালেন| তবুও ঊরিয বাড়ী গেল না| সেই সন্ধ্যায, ঊরিয রাজার ফটকের বাইরে রাজার অন্য ভৃত্যদের সঙ্গে ঘুমিযেছিল| 14 পরদিন সকালে দায়ূদ য়োয়াবকে একখানা চিঠি লিখলেন| দায়ূদ চিঠিটাকে ঊরিযকে দিয়ে পাঠাবার ব্যবস্থা করলেন| 15 চিঠিতে দায়ূদ লিখেছিলেন, “ঊরিযকে প্রথম সারির ঠিক সেইখানে দাঁড় করাবে যেখানে লড়াইটা কঠিনতম| তারপর ওকে একা ফেলে পালিয়ে আসবে এবং ওকে যুদ্ধ ক্ষেত্রেই মরতে দেবে|” 16 পরদিন য়োয়াব সারা শহর ঘুরে দেখলেন কোথায সব থেকে সাহসী ও শক্তিশালী অম্মোনীয়রা রযেছে| সেইখানে যাবার জন্য তিনি ঊরিযকে নির্বাচন করলেন| 17 রব্বা শহরের লোকরা য়োয়াবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এল| দায়ূদের কিছু লোক মারা গেল| হিত্তীয় ঊরিয তাদেরই মধ্যে একজন| 18 তারপর য়োয়াব, যুদ্ধে কি হয়েছে সেই বিষযে দায়ূদকে সংবাদ দিলেন| 19 যুদ্ধে যা যা ঘটেছে তা দায়ূদকে বলার জন্য য়োয়াব এক বার্তাবাহককে আদেশ করলেন| 20 “হয়তো বা রাজা ক্রুদ্ধ হবেন এবং জিজ্ঞাসা করবেন, ‘লড়াইয়ের জন্য য়োয়াবের সেনারা শহরের অত কাছে কেন গেল? তিনি নিশ্চয়ই জানেন যে শহরের প্রাচীরের ওপরে ধনুর্ধররা আছে যারা তার লোকদের শরাঘাতে শুইযে দিতে পারে? 21 তাঁর নিশ্চয়ই স্মরণে আছে যে এক মহিলা য়িরূব্বেশতের পুত্র অবীমেলককে হত্যা করেছিল| ঘটনাটি তেবেষে ঘটেছিল| মহিলাটি নগরীর প্রাচীরের ওপর থেকে অবীমেলকের ওপর একটা চাকীর ওপরের পাথর ফেলে দিয়েছিল| তাই কেন তারা প্রাচীরের অত কাছে গেল?’ যদি রাজা দায়ূদ ওই ধরণের কিছু বলেন তুমি অবশ্যই তাঁকে এই খবর দেবে: ‘আপনার লোক হিত্তীয় ঊরিয়ও মারা গেছে|”‘ 22 বার্তাবাহক দায়ূদের কাছে গেল এবং য়োয়াব বার্তাবাহককে যা যা বলতে বলেছিলেন সে সব কিছুই দায়ূদকে বলল| 23 বার্তাবাহক দায়ূদকে বলল, “অম্মোনদের লোকরা যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের আক্রমণ করে| আমরা লড়াই করে, তাদের শহরের প্রবেশদ্বার পর্য়ন্ত তাড়া করি| 24 তখন নগর প্রাচীরের ওপর থেকে বিপক্ষের লোকরা আপনার লোকদের ওপর তীর চালায| এতে আপনার কিছু লোক মারা যায়| আপনার আধিকারিক হিত্তীয় ঊরিয তাদের মধ্যে একজন|” 25 দায়ূদ বার্তাবাহককে বললেন, “য়োয়াবকে গিয়ে বল, ‘এ নিয়ে অতিরিক্ত বিমর্ষ হযো না| একটা তরবারি একজনের পর আর একজনকে হত্যা করতে পারে| রাজাদের বিরুদ্ধে আরও জোরদার আক্রমণ চালাও - তোমাদের জয় হবেই|’ এই কথাগুলি বলে য়োয়াবকে উত্সাহিত কর|” 26 বত্শেবা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর পেলেন এবং তার জন্য কাঁদলেন| 27 তাঁর দুঃখের দিন অতিক্রান্ত হলে, দায়ূদ তাঁকে তাঁর বাড়ীতে নিয়ে যাবার জন্য ভৃত্য পাঠালেন| তিনি দায়ূদের পত্নী হলেন এবং দায়ূদের জন্য একটা সন্তানের জন্ম দিলেন| কিন্তু দায়ূদের এই পাপ প্রভু পছন্দ করলেন না|
1 প্রভু নাথনকে দায়ূদের কাছে পাঠালেন| নাথন দায়ূদের কাছে গেলেন| নাথন বললনে, “এক শহরে দু’জন লোক ছিল| একজন ছিল ধনী, অন্যজন দরিদ্র| 2 ধনী লোকটির অনেক মেষ ও গবাদি পশু ছিল| 3 দরিদ্র লোকটির একটা স্ত্রী মেষ ছাড়া আর কিছুই ছিল না| দরিদ্র লোকটি মেষটাকে খাওয়াতো| মেষটা ঐ দরিদ্র লোক ও তার সন্তানসন্ততিদের সঙ্গেই বড় হল| মেষটা গরীব লোকটার থেকেই খাবার খেত এবং তার পেয়ালা থেকেই পান করত| মেষটা ঐ লোকটির বুকের ওপর ঘুমাতো| মেষটা লোকটির মেয়ের মতই ছিল| 4 “একদিন এক পথিক ধনী লোকটির সঙ্গে দেখা করতে এলো| ধনী লোকটি পথিককে কিছু খাবার দিতে চাইলো| কিন্তু পথিককে দেবার জন্য ধনী লোকটি তার মেষ বা গবাদি পশুর থেকে কিছুই নিতে চাইল না| ধনী লোকটি, দরিদ্র লোকটির মেষটা নিয়ে এলো এবং তাকে কেটে পথিকের জন্য রান্না করলো|” 5 দায়ূদ ধনী লোকটির ওপর ভীষণ রেগে গেলেন| তিনি নাথনকে বললেন, “এ কথা জীবন্ত প্রভুর মতই সত্য যে, যে লোক এ কাজ করেছে সে অবশ্যই মারা যাবে| 6 তাকে ঐ মেষের মূল্যের চারগুণ বেশী দিতে হবে কারণ সে এমন ভয়াবহ কাজ করেছে এবং তার কোন করুণা ছিল না|” 7 নাথন দায়ূদকে বললেন, “তুমিই সেই ধনী ব্যক্তি| প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথাই বলেন, “আমি তোমাকে ইস্রায়েলের রাজারূপে মনোনীত করেছি| আমি তোমাকে শৌলের হাত থেকে রক্ষা করেছি| 8 আমিই তোমাকে তার পরিবার এবং স্ত্রীগণকে দিয়েছি| এবং আমি তোমাকে ইস্রাযেল এবং যিহূদার রাজা করেছিলাম| তাও যেন য়থেষ্ট ছিল না, আমি তোমাকে আরো আরো অনেক কিছু দিয়েছি| 9 কিন্তু কেন তুমি প্রভুর আদেশ অমান্য করলে? কেন তুমি সেই কাজ করলে যা তিনি (ঈশ্বর) গর্হিত বলে ঘোষণা করেছেন? তুমি হিত্তীয় ঊরিযকে অম্মোনদের দ্বারা হত্যা করালে এবং তার স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিলে| এই ভাবে তুমি তরবারির দ্বারা ঊরিযকে হত্যা করালে| 10 এই কারণে তোমার পরিবারও তরবারি থেকে রক্ষা পাবে না| তুমি ঊরিয হিত্তীয়ের স্ত্রীকে তোমার স্ত্রী করার জন্য নিয়ে এসেছ| এই ভাবে তুমি বুঝিযে দিয়েছ যে তুমি আমায় ঘৃণা করেছ|’ 11 “প্রভু এ কথাই বলেন: ‘আমি তোমাকে সমস্যায় ফেলব| এই সমস্যা তোমার নিজের পরিবার থেকেই আসবে| আমি তোমার স্ত্রীদের তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবো এবং তোমারই ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজনকে দিয়ে দেব| সে তাদের সঙ্গে শয়ন করবে এবং প্রত্যেকে তা দিনের আলোর মত জানতে পারবে| 12 তুমি বত্শেবার সঙ্গে গোপনে শয়ন করেছিলে| কিন্তু আমি তোমাকে এমন শাস্তি দেব যাতে সব ইস্রায়েলীয় তা জানতে পারে|” 13 তখন দায়ূদ নাথনকে বললেন, “আমি প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি|”নাথন দায়ূদকে বললেন, “এই পাপের জন্যও প্রভু তোমায় ক্ষমা করে দেবেন| তুমি মরবে না| 14 কিন্তু তুমি এমন কাজ করেছ যাতে প্রভুর বিরোধীরা তাঁর ওপর থেকে শ্রদ্ধা হারিযেছে| তাই তোমার শিশু সন্তান মারা যাবে|” 15 তারপর নাথন বাড়ী চলে গেলেন| দায়ূদ এবং বত্শেবার যে শিশুপুত্র জন্মেছিল, প্রভু তাকে অসুস্থ করলেন| 16 শিশু সন্তানটির জন্য দায়ূদ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন| দায়ূদ খাওয়া দাওযা ত্যাগ করলেন| তিনি ঘরের ভিতরে গিয়ে সারারাত সেখানে থাকলেন| সারারাত তিনি মেঝেতে শুয়ে কাটালেন| 17 দায়ূদের পরিবারের লোকরা এসে তাকে মেঝে থেকে ওঠানোর চেষ্টা করল| তিনি সেই সব নেতাদের সঙ্গে খাবার খেতে অস্বীকার করলেন| 18 সপ্তম দিনে, শিশুটি মারা গেল| শিশুটি যে মারা গেছে এ কথা দায়ূদের ভৃত্যরা দায়ূদকে বলতে ভয় পেল| তারা বলল, “দেখ, শিশুটি যখন বেঁচ্ছেিল তখন আমরা দায়ূদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম| তিনি কিন্তু আমাদের কথা শুনতে চান নি| যদি আমরা বলি যে শিশুটি মারা গেছে, হয়তো তিনি নিজের ক্ষতি করবেন|” 19 দায়ূদ তাঁর ভৃত্যদের ফিসফিস করে কথা বলতে দেখলেন| তখন তিনি বুঝতে পারলেন শিশুটি মারা গেছে| দায়ূদ তাঁর ভৃত্যদের জিজ্ঞাসা করল, “শিশুটি কি মারা গেছে?”ভৃত্যরা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, সে মারা গেছে|” 20 তখন দায়ূদ মেঝে থেকে উঠে পড়লেন| তিনি স্নান করলেন| জামাকাপড় বদল করে, অন্য কাপড় পরলেন| প্রভুর উপাসনার জন্য তিনি প্রভুর ঘরে গেলেন| তারপর তিনি বাড়ী গেলেন এবং কিছু খাবার চাইলেন| তাঁর ভৃত্যরা তাঁকে কিছু খাবার এনে দিল এবং তিনি খেলেন| 21 দায়ূদের দাসরা তাঁকে বলল, “কেন আপনি এই সব কাজ করছেন? শিশুটি যখন বেঁচ্ছেিল তখন আপনি কিছু খেলেন না| আপনি কাঁদলেন| কিন্তু শিশুটি মারা যেতে আপনি উঠলেন এবং খাবার খেলেন|” 22 দায়ূদ বলল, “শিশুটি যখন বেঁচ্ছেিল তখন আমি আহার ত্যাগ করেছিলাম এবং কেঁদেছিলাম কারণ আমি ভেবেছিলাম, ‘কে বলতে পারে? হয়তো প্রভু আমার প্রতি করুণা করবেন এবং শিশুটিকে বাঁচতে দেবেন|’ 23 কিন্তু এখন তো শিশুটি মৃত| তাই আমি কি আহার ত্যাগ করব? আমি কি শিশুটিকে আর ফিরে পাবো? না! একদিন আমি তার সঙ্গে মিলিত হব, কিন্তু সে আমার কাছে ফিরে আসতে পারে না|” 24 দায়ূদ তাঁর স্ত্রী বত্শেবাকে সান্ত্বনা দিলেন| তিনি তাঁর সঙ্গে শুলেন এবং মিলিত হলেন| বত্শেবা পুনর্বার গর্ভবতী হলেন| তাঁর আর একটি সন্তান হল| দায়ূদ তার নাম রাখলেন শলোমন| 25 প্রভু ভাববাদী নাথনের মারফত্ তাঁর বার্তা পাঠালেন| নাথন শলোমনের নাম রাখলেন য়িদীদীয| প্রভুর জন্যেই নাথন এই কাজ করলেন| 26 রব্বা অম্মোনদের রাজধানী শহর ছিল| য়োয়াব রব্বার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা দখল করেন| 27 য়োয়াব দায়ূদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন এবং বললেন, “আমি রব্বার জলের শহরটি যুদ্ধ করে জয় করেছি| 28 এখন অন্যান্য লোকদের পাঠিয়ে এই শহর আক্রমণ করুন| আমি অধিকার করবার আগেই আপনাকে এই শহর দখল করতে হবে| যদি আমি এই শহর দখল করি তবে এই শহর আমার নামে পরিচিত হবে|” 29 তখন দায়ূদ সব লোকদের একসঙ্গে জড়ো করলেন এবং রব্বার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন| তিনি রব্বার বিরুদ্ধে লড়াই করলেন এবং রব্বা শহর দখল করলেন| 30 দায়ূদ তাদের রাজার মাথাথেকে মুকুট কেড়ে নিলেন| মুকুটটিতে প্রায 75 পাউণ্ড সোনা ছিল| মুকুটটিতে অনেক মূল্যবান মনিমুক্তো ছিল| তারা সেই মুকুট দায়ূদের মাথায় পরিযে দিল| সেই শহর থেকে দায়ূদ অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে এসেছিলেন| 31 দায়ূদ রব্বার লোকদেরও বের করে আনেন এবং তাদের করাত, গাঁইতি ও কুড়ুল দিয়ে কাজ করিযেছিলেন| তিনি তাদের ইঁট দিয়ে গাঁথুনির কাজ করাতে বাধ্য করেছিলেন| অম্মোনদের শহরগুলোর সকলের প্রতি দায়ূদ এই একই রকম কাজ করেছিলেন| তারপর দায়ূদ এবং তাঁর সব সৈন্যসামন্ত জেরুশালেমে ফিরে গিয়েছিল|
1 অবশালোম নামে দায়ূদের এক পুত্র ছিল| অবশালোমের বোন ছিল তামর| তামর ছিল অত্যন্ত সুন্দরী| দায়ূদের আর এক পুত্র অম্নোন 2 তামরকে ভালোবেসেছিল| তামর ছিল কুমারী| অম্নোন কখনও ভাবে নি যে সে তামরের প্রতি কোন খারাপ ব্যবহার করবে| কিন্তু অম্নোন তাকে প্রচণ্ডভাবে চাইত| অম্নোন তামর সম্পর্কে প্রচণ্ড চিন্তা করত এবং একসময় সে ভান করে নিজেকে অসুস্থ করে তুলল| 3 শিমিযের পুত্র য়োনাদব অম্নোনের বন্ধু ছিল| (শিমিয ছিল দায়ূদের ভাই|) য়োনাদব প্রচণ্ড চালাক ছিল| 4 য়োনাদব তাকে বলল, “প্রতিদিনই তুমি রোগা হয়ে যাচ্ছ! তুমি তো রাজার পুত্র| তোমার তো খাওয়ার অভাব নেই, তাহলে কেন তোমার স্বাস্থ্য় খারাপ হচ্ছে? আমাকে বল!”অম্নোন য়োনাদবকে বলল, “আমি তামরকে ভালোবাসি| কিন্তু সে আমার ভাই অবশালোমের বোন|” 5 য়োনাদব অম্নোনকে বলল, “যাও, বিছানায শুয়ে অসুস্থতার ভান কর| যখন তোমার পিতা তোমাকে দেখতে আসবেন তখন তাকে বলবে, ‘তামরকে আমার কাছে আসতে দিন| সে আমার জন্য খাবার আনুক| সে আমার সামনে আহার প্রস্তুত করুক| আমি তার রান্না করা দেখব এবং তার হাতে খাব|” 6 এরপর অম্নোন বিছানায শুয়ে পড়ে অসুস্থতার ভান করল| রাজা দায়ূদ তাকে দেখতে এলেন| অম্নোন রাজা দায়ূদকে বলল, “আমার বোন তামরকে আমার কাছে আসতে দিন| আমার সামনে তাকে দুটো পিঠে বানাতে দিন| তারপর আমি ওর হাতেই পিঠে খাব|” 7 দায়ূদ তামরের বাড়ীতে বার্তাবাহক পাঠালেন| বার্তাবাহক গিয়ে তামরকে বলল, “তোমার ভাই অম্নোনের বাড়ী যাও এবং তার জন্য খাবার তৈরী কর|” 8 তখন তামর তার ভাই অম্নোনের বাড়ী গেল| অম্নোন বিছানায শুয়ে ছিল| তামর এক তাল মযদা নিয়ে দু হাতে মেখে পিঠে তৈরী করল| সে যখন এই সব করছিল তখন অম্নোন দেখছিল| 9 তারপর তামর চাটু থেকে পিঠেগুলিকে অম্নোনের জন্য বের করে আনলে| কিন্তু অম্নোন তা খেল না| অম্নোন তার ভৃত্যদের বলল, “এখান থেকে বেরিয়ে যাও| আমাকে একা থাকতে দাও|” তখন তার সব ভৃত্য ঘর থেকে বেরিয়ে গেল| 10 তখন অম্নোন তামরকে বলল, “খাবারগুলি আমার শোবার ঘরে নিয়ে এসো এবং আমাকে নিজে হাতে খাইযে দাও|”তখন তামর তার তৈরী করা পিঠেগুলি নিয়ে তার ভাইযের শোবার ঘরে গেল| 11 সে যখন অম্নোনকে খাওয়াতে শুরু করেছে তখন অম্নোন তার হাত চেপে ধরল| সে তাকে বলল, “বোন, এসো আমার সঙ্গে শোও|” 12 তামর অম্নোনকে বলল, “না ভাই! আমাকে এই সব করতে বাধ্য করো না| এই ধরণের লজ্জাজনক কাজ করো না| এই ধরণের ভয়াবহ কাজ ইস্রায়েলে হওয়া উচিত্ নয়| 13 আমি আমার লজ্জা থেকে কোনদিন মুক্তি পাব না| লোকরা ভাববে যে তুমি অপরাধীদের একজন| রাজাকে জিজ্ঞাসা কর, “তিনি তোমাকে আমায় বিয়ে করতে অনুমতি দেবেন|” 14 কিন্তু অম্নোন তামরের কথা শুনল না| সে তামরের থেকে শক্তিশালী ছিল| সে তাকে নিজের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করল| 15 তারপর অম্নোন তামরকে ঘৃণা করতে শুরু করল| অম্নোন আগে তামরকে যতখানি ভালোবেসেছিল এখন তার থেকে বেশী ঘৃণা করতে লাগল| অম্নোন তামরকে বলল, “ওঠো এবং এখান থেকে বেরিয়ে যাও|” 16 তামর অম্নোনকে বলল, “না! আমাকে এই ভাবে তাড়িয়ে দিও না| এমনকি আমার সঙ্গে একটু আগে যা করলে তার থেকেও সেটা খারাপ কাজ হবে|”অম্নোন তার কথা শুনল না| 17 অম্নোন তার ভৃত্যদের ডেকে বলল, “এই মেয়েটাকে এখুনি আমার ঘর থেকে দূর করে দাও এবং দরজা বন্ধ করে দাও|” 18 তখন অম্মোনের ভৃত্যরা তামরকে ঘর থেকে দূর করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল|তামর বহু রঙে রঙিন একটা বড় কাপড় পরেছিল| রাজার কুমারী মেয়েরা এই ধরণের কাপড় পরতো| 19 তামর সেই কাপড় ছিঁড়ে ফেলল এবং মাথায় কিছুটা ছাই দিল| তারপর সে নিজের মাথায় হাত দিয়ে কাঁদতে লাগল| 20 তখন তামরের ভাই অবশালোম তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কি তোমার ভাই অম্নোনের কাছে ছিলে? সে কি তোমায় আঘাত দিয়েছে? বোন আমার, এখন শান্ত হও|অম্নোন তোমার ভাই, তাই এই ব্যাপারটা আমরা ভেবে দেখব| তুমি কিছু চিন্তা কর না|” তাই তামর কিছু না বলে চুপচাপ তার ভাই অবশালোমের বাড়ী গেল এবং সেই খানেই থাকল| 21 এই সংবাদ শুনে রাজা দায়ূদ প্রচণ্ড রেগে গেলেন| 22 অবশালোম অম্নোনকে ঘৃণা করতে শুরু করল| অবশালোম অম্নোনকে ভালো বা মন্দ কোন কথাই বলল না| অবশালোম অম্নোনকে ঘৃণা করতে লাগল কারণ অম্নোন তার বোন তামরকে ধর্ষণ করেছিল| 23 দু বছর পরে, অবশালোমের লোকরা তাদের মেষের গা থেকে পশম কাটতে বাল্-হাত্সোরে এলো| অবশালোম তা পর্য়বেক্ষণ করার জন্য রাজার সব সন্তানদের ডাকল| 24 অবশালোম রাজার কাছে গিয়ে বলল, “আমার কিছু লোকরা আমার মেষগুলির গা থেকে লোম কাটতে আসছে| দয়া করে আপনার ভৃত্যদের সঙ্গে নিয়ে এসে দেখুন|” 25 রাজা দায়ূদ অবশালোমকে বলল, “না, পুত্র| আমরা যাব না| তাতে তোমার সমস্যাই বাড়বে|”অবশালোম, দায়ূদকে যাওয়ার জন্য অনেক অনুনয় বিনয় করলো| কিন্তু দায়ূদ গেলেন না, তিনি তাকে তাঁর আশীর্বাদ দিলেন| 26 অবশালোম বলল, “যদি আপনি যেতে না চান তাহলে আমার ভাই অম্নোনকে আমার সঙ্গে যেতে দিন|”রাজা দায়ূদ অবশালোমকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন সে তোমার সঙ্গে যাবে?” 27 অবশালোম দায়ূদের কাছে অনুনয় করেই চলল| সব শেষে দায়ূদ, অম্নোন এবং রাজার অন্যান্য সন্তানদের অবশালোমের সঙ্গে যেতে দিতে রাজী হলেন| 28 তারপর অবশালোম তার ভৃত্যদের এই নির্দেশ দিল, “অম্নোনকে নজরে রাখ| যখন দেখবে যে দ্রাক্ষারস পান করে মেজাজে আছে তখন আমি তোমাদের নির্দেশ দেব| তোমরা অবশ্যই অম্নোনকে আক্রমণ করবে এবং হত্যা করবে| তোমরা কেউ শাস্তি পাবার ভয় করো না| সর্বোপরি তোমরা তো কেবল আমার আদেশ পালন করবে| বীরের মত সাহসী হও|” 29 অতএব অবশালোমের সৈন্যরা তাই করল যা সে তাদের করতে বলেছিল| তারা অম্নোনকে হত্যা করল| কিন্তু দায়ূদের অন্যান্য পুত্ররা পালিয়ে গেল| প্রতিটি পুত্র তাদের খচ্চরে চড়ে পালাল| 30 রাজার ছেলেরা তখনও নগরীর পথেই রযেছে| কিন্তু কি ঘটেছে তা রাজা দায়ূদ সংবাদ পেয়ে গেছেন| কিন্তু তিনি এ রকম ভুল সংবাদ পেয়েছিলেন: “অবশালোম রাজার সব ছেলেদেরই হত্যা করেছে এবং একটা ছেলেও বেঁচে নেই|” 31 রাজা দায়ূদ শোকে দুঃখে নিজের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেললেন এবং মাটিতে শুয়ে পড়লেন| দায়ূদের যে সব আধিকারিক তাঁর কাছে দাঁড়িয়েছিল তারাও নিজেদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলল| 32 কিন্তু, তখন য়োনাদব, শিমিযর পুত্র যে দায়ূদের একজন ভাই ছিল সে বলল, “একথা ভাববেন না যে রাজার সব ছেলেই মারা গেছে| একমাত্র অম্নোনই মারা গেছে| যে দিন অম্নোন তামরকে ধর্ষণ করে সেদিন থেকেই অবশালোম এই ঘটনা ঘটানোর জন্য ফন্দি আঁটছিলো| 33 হে আমার মনিব এবং রাজা, আপনি ভাববেন না যে আপনার সব ছেলে মারা গেছে, শুধুমাত্র অম্নোনই মারা গেছে|” 34 অবশালোম দৌড়ে পালিয়ে গেল|নগরীর প্রাচীরে একজন প্রহরী দাঁড়িয়েছিল| সে দেখল পাহাড়ের ওদিক থেকে বহু লোকজন আসছে| 35 তখন য়োনাদব রাজা দায়ূদকে বলল, “দেখুন, আমি কি বলেছি! রাজার পুত্ররা আসছে|” 36 য়োনাদব এই কথা বলার প্রায সঙ্গে সঙ্গেই রাজার পুত্ররা এসে পড়ল| তারা উচ্চস্বরে কাঁদছিল| দায়ূদ এবং তাঁর সব আধিকারিকরাও কাঁদতে শুরু করে দিল| তারা সকলে উথালি পাথালি হয়ে কাঁদল| 37 দায়ূদ প্রতিদিনই তাঁর পুত্র অম্নোনের জন্য কাঁদতেন|অবশালোম গশূরের রাজা, অম্মীহূরের পুত্র তল্মযের কাছে পালিয়ে গেল| 38 গশূরে পালিয়ে যাবার পর অবশালোম সেখানে তিন বছর ছিল| 39 অম্মোনের মৃত্যুতে রাজা দায়ূদকে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি অবশালোমের অভাব প্রচণ্ডভাবে অনুভব করেছিলেন|
1 সরূযার পুত্র য়োয়াব জানতেন যে রাজা দায়ূদ প্রচণ্ডভাবে অবশালোমের অভাব বোধ করছেন| 2 য়োয়াব তকোযেতে সেখান থেকে একজন জ্ঞানী মহিলাকে আনতে আদেশ দিয়ে বার্তাবাহকদের পাঠালেন| য়োয়াব সেই জ্ঞানী মহিলাকে বললেন, “প্রচণ্ড দুঃখের ভান কর এবং বিমর্ষ লাগে এমন জামাকাপড় পর| একদম সাজ-গোজ করো না| এমন নিপুণ অভিনয় করবে যেন দেখে মনে হয়, তুমি দীর্ঘদিন ধরে কাঁদছ| 3 রাজার কাছে যাও এবং তাকে ঠিক এ কথাগুলোই বলবে যা আমি তোমায শিখিযে দিচ্ছি|” তারপর য়োয়াব, সেই জ্ঞানী মহিলাটিকে কি কি বলতে হবে তা বলে দিলেন| 4 তখন তকোযের সেই মহিলা রাজার সঙ্গে কথা বলল| মাটির দিকে মাথা নত করে সে বলল, “রাজা, দয়া করে আমায় বাঁচান|” 5 রাজা দায়ূদ তাকে বললেন, “তোমার সমস্যা কি?”মহিলা বলল, “আমি একজন বিধবা| আমার স্বামী মারা গেছে| 6 আমার দুটি পুত্র ছিল| তারা মাঠে লড়াই করছিল| তাদের বাধা দেবার মত কেউ ছিল না| আমার এক পুত্র আর এক পুত্রকে হত্যা করেছে| 7 এখন গোটা পরিবার আমার বিরুদ্ধে| তারা আমাকে বলল, ‘সেই পুত্রকে নিয়ে এসো যে তার ভাইকে মেরেছে - আমরাও তাকে মেরে ফেলবো| কেন? কারণ সে তার ভাইকে হত্যা করেছে|’ আমার আগুনের শেষ স্ফুলিঙ্গের মত যদি ওরা আমার পুত্রকে মেরে ফেলে তাহলে সেই আগুন জ্বলে শেষ হয়ে যাবে| সেই একমাত্র জীবিত সন্তান যে তার পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে| অন্যথায়, আমার স্বামীর সম্পত্তি ভুল হাতে পড়বে এবং তার নাম সেই জমি থেকে মুছে যাবে|” 8 তখন রাজা সেই মহিলাকে বললেন, “বাড়ী চলে যাও, আমি তোমার বিষযগুলি দেখব|” 9 তকোযের মহিলা রাজাকে বলল, “আমার মনিব এবং রাজা, সব দোষ আমার ওপর এবং আমার পরিবারের ওপর আসুক| আপনি এবং আপনার রাজত্ব নির্দোষ হোক|” 10 রাজা দায়ূদ বললেন, “কেউ যদি তোমাকে খারাপ কিছু বলে, তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো| সে দ্বিতীয়বার তোমাকে জ্বালাতন করবে না|” 11 মহিলা বলল, “আপনার প্রভু ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলুন যে আপনি সেই সব লোকদের বাধা দেবেন| তারা আমার পুত্রকে তার ভাইকে হত্যা করার জন্য শাস্তি দিতে চাইছে| আপনি শপথ করুন যে ঐ লোকদের আপনি আমার পুত্রকে হত্যা করতে দেবেন না|”দায়ূদ বললেন, “অস্তিত্বময প্রভুর নামে শপথ নিয়ে বলছি, কেউ তোমার পুত্রের ক্ষতি করতে পারবে না| এমনকি তার মাথার একটা চুলও মাটিতে পড়বে না|” 12 মহিলা বলল, “হে আমার মনিব এবং রাজা, আপনাকে আর কযেকটা কথা বলতে দিন|”রাজা বললেন, “বল|” 13 তারপর সেই মহিলা বলল, “কেন আপনি ঈশ্বরের লোকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন? হ্যাঁ, যখন আপনি এই ধরণের কথাবার্তা বলেন তখন আপনি বুঝিয়ে দেন যে আপনি অপরাধী| কেন? কারণ যে সন্তানকে আপনি ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন, তাকে আপনি ঘরে ফিরিযে আনেন নি| 14 আমরা প্রত্যেকেই একদিন না একদিন মরব| আমরা প্রত্যেকেই মাটিতে ফেলে দেওয়া জলের মত হব| সেই জলকে কেউই পুনরায মাটি থেকে তুলে আনতে পারে না| আপনি জানেন ঈশ্বর মানুষকে ক্ষমা করেন| যারা নিরাপত্তার জন্য পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, ঈশ্বর তাদের জন্য পরিকল্পনা করেছিলেন| ঈশ্বর তাঁর কাছ থেকে পালিয়ে যাবার জন্য কাউকে বাধ্য করেন না| 15 হে আমার মনিব এবং রাজা এই কথাই আমি আপনাকে বলতে এসেছি| কেন? কারণ লোকরা আমাকে ভয় পাইযে দিয়েছে| আমি নিজেকেই বললাম, “আমি রাজার সঙ্গে কথা বলব| হয়তো রাজা আমাকে সাহায্য করতে পারবেন| 16 রাজা আমার কথা শুনবেন এবং যারা আমাকে ও আমার পুত্রকে মেরে ফেলতে চাইছে তাদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করবেন| ঈশ্বর আমাদের যা দিয়েছিলেন, সেই লোকটি তা পাওয়া থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে চায|” 17 আমি জানি আমার মনিব রাজার কথা আমাকে স্বস্তি দেবে, কারণ আপনি ঈশ্বরের দূতের মত| আপনি ভাল এবং মন্দ দুটো বিষযেই অবগত আছেন এবং প্রভু, আপনার ঈশ্বর আপনার সঙ্গেই উপস্থিত আছেন|” 18 রাজা দায়ূদ প্রত্যুত্তরে সেই মহিলাকে বললেন, “আমি যে প্রশ্ন করব তুমি অবশ্যই তার উত্তর দেবে|”মহিলাটি বলল, “হে গুরু, আমার রাজা, আপনার প্রশ্ন করুন|” 19 রাজা দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “য়োয়াব কি তোমাকে এই সব কথা বলতে বলেছে?”মহিলা উত্তর দিল, “আপনার দিব্যি হে আমার মনিব রাজা, আপনি ঠিকই বলেছেন| আপনার আধিকারিক য়োয়াবই আমাকে এই সব কথা আপনাকে বলতে বলেছে| 20 য়োয়াব এই কাজগুলি করেছে যাতে আপনি এই ঘটনাগুলিকে অন্যভাবে দেখতে পান| হে আমার মনিব, আপনি ঈশ্বরের দূতের মতই জ্ঞানী| এই পৃথিবীতে যা যা ঘটে আপনি তার সবই জানেন|” 21 রাজা য়োয়াবকে বললেন, “দেখ, আমি যা প্রতিজ্ঞা করেছি, আমি তাই করব| তরুণ অবশালোমকে ফিরিযে নিয়ে এস|” 22 য়োয়াব নত হলেন এবং রাজা দায়ূদকে আশীর্বাদ করলেন| তিনি রাজাকে বললেন, “আজ আমি জানতে পারলাম আপনি আমার প্রতি প্রসন্ন, কারণ আমি যা চেয়েছিলাম আপনি তাই করেছেন|” 23 তারপর য়োয়াব উঠে পড়লেন এবং গশূরে গিয়ে অবশালোমকে জেরুশালেমে নিয়ে এলেন| 24 কিন্তু রাজা দায়ূদ বললেন, “অবশালোম তার নিজের বাড়ীতে ফিরে যেতে পারে| সে আমার সঙ্গে দেখা করতে পারবে না|” তখন অবশালোম নিজের বাড়ীতে ফিরে গেল| অবশালোম রাজার কাছে দেখা করতে যেতে পারল না| 25 লোক অবশালোমের সৌন্দর্য়্য়ের প্রশংসা করত| অবশালোমের মত সুদর্শন গোটা ইস্রায়েলে কেউ ছিল না| পা থেকে মাথা পর্য়ন্ত অবশালোমের কোথাও কোন খুঁত ছিল না| 26 বছরের শেষে অবশালোম তার মাথা থেকে চুল কেটে ফেলত এবং সেই চুল ওজন করত| সেই চুল ওজনে প্রায আড়াই সেরের মত হত| 27 অবশালোমের তিনটি পুত্র এবং একটি কন্যা ছিল| তার কন্যার নাম ছিল তামর| তামর অতীব সুন্দরী ছিল| 28 অবশালোম পুরো দু বছর জেরুশালেমে ছিল| এই সমযে রাজা দায়ূদের সঙ্গে তার দেখা করার অনুমতি ছিল না| 29 অবশালোম য়োয়াবের কাছে বার্তাবাহক পাঠালো| বার্তাবাহক য়োয়াবকে বলল অবশালোমকে রাজার কাছে পাঠাতে| কিন্তু য়োয়াব অবশালোমের কাছে এলেন না| দ্বিতীয়বার অবশালোম খবর পাঠাল| এবারও য়োয়াব এলেন না| 30 তখন অবশালোম তার ভৃত্যদের বলল, “দেখ, আমার জমির পাশেই য়োয়াবের জমি| সে তার ক্ষেতে যব ফলিযেছে| তোমরা গিয়ে আগুন ধরিয়ে দাও|”তখন অবশালোমের ভৃত্যরা গিয়ে য়োয়াবের জমিতে আগুন ধরিয়ে দিল| 31 য়োয়াব অবশালোমের বাড়ী এলেন| য়োয়াব অবশালোমকে বললেন, “কেন তোমার ভৃত্যরা আমার জমিতে আগুন দিয়েছে?” 32 অবশালোম য়োয়াবকে বলল, “আমি তোমাকে একটা খবর পাঠিয়েছিলাম, এখানে আসতে বলেছিলাম| আমি তোমাকে রাজার কাছে পাঠাতে চেয়েছিলাম| আমি চেয়েছিলাম তুমি তাঁকে জিজ্ঞাসা কর কেন তিনি আমাকে গশূর থেকে ঘরে ফিরে আসতে বলেছিলেন| যেহেতু আমার তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নেই, কাজেই আমার পক্ষে সেখানে থেকে যাওয়াই ভাল হত| এখন আমাকে রাজার সঙ্গে দেখা করতে দাও| যদি আমি কোন অন্যায করে থাকি, তবে তিনি আমায় হত্যা করতে পারেন|” 33 য়োয়াব রাজার কাছে এসে অবশালোমের সব কথা বললেন| রাজা অবশালোমকে ডেকে পাঠালেন| অবশালোম রাজার কাছে এলো| রাজার সামনে এসে অবশালোম মাটিতে নত হয়ে রাজাকে প্রণাম করল এবং রাজা অবশালোমকে চুম্বন করলেন|
1 এরপর অবশালোম নিজের জন্য একটা রথ এবং অনেকগুলো ঘোড়া নিল| যখন সে রথ চালিয়ে যেত তখন তার রথের সামনে দৌড়াবার জন্য 50 জন লোকও ছিল| 2 অবশালোম প্রতিদিন সকালে খুব ভোরে উঠে ফটকের কাছেএসে দাঁড়াত| অবশালোম এমন একজনকে খুঁজত যে তার সমস্যা নিয়ে বিচারের জন্য রাজা দায়ূদের কাছে যাচ্ছে| অবশালোম তার সঙ্গে কথা বলত| অবশালোম বলত, “কোন শহর থেকে তুমি আসছ?” লোকটা হয়তো বলত, “আমি ইস্রায়েলের অমূক পরিবারগোষ্ঠীর অমূক পরিবারের লোক|” 3 তখন অবশালোম তাকে বলত, “দেখ, তুমি ঠিক বলেছ কিন্তু রাজা তো তোমার কথা শুনবেন না|” 4 অবশালোম বলত, “আহা, আমার ইচ্ছা হয় কেউ বেশ আমাকে এই দেশের বিচারক করে দিত| তাহলে যারা সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসত তাদের প্রত্যেককে আমি সাহায্য করতে পারতাম| তার সমস্যার সুষ্ঠ সমাধান পেতে আমি তাকে সাহায্য করতে পারতাম|” 5 যদি কোন ব্যক্তি অবশালোমের কাছে এসে মাথা নীচু করে, তাহলে সে তার সঙ্গে তার সবচেয়ে ভাল বন্ধুর মতই ব্যবহার করত| আবশালোম গিয়ে তাকে হাত বাড়িযে জড়িয়ে ধরত এবং চুম্বন করত| 6 সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা, যারা রাজা দায়ূদের কাছে ন্যাযের জন্য আসত তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই অবশালোম এক রকম আচরণ করত| এই ভাবে অবশালোম ইস্রায়েলের লোকদের মন জয় করেছিল| 7 চার বছরপর অবশালোম রাজা দায়ূদকে বলল, “হিব্রোণে থাকার সময় প্রভুর কাছে যে বিশেষ প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তা পূরণ করার জন্যে আমাকে যেতে দিন| 8 অরামের গশূরে থাকার সমযেও আমি সেই একই প্রতিশ্রুতি করেছিলাম| আমি বলেছিলাম, ‘প্রভু যদি আমাকে জেরুশালেমে ফিরিযে আনেন, আমি প্রভুর সেবা করব|”‘ 9 রাজা দায়ূদ বলেন, “শান্তিতে যাও|”অবশালোম হিব্রোণে চলে গেলেন| 10 কিন্তু অবশালোম ইস্রায়েলের প্রত্যেকটা পরিবারগোষ্ঠীর কাছে গুপ্তচর পাঠাল| চররা লোকদের বলতে লাগল, “যখন তোমরা শিঙার রব শুনবে তখন বলবে ‘অবশালোম হিব্রোণের রাজা হয়েছে|”‘ 11 অবশালোম তার সঙ্গে যাবার জন্য 200 জন লোককে ডাকল| তারা তার সঙ্গে জেরুশালেম থেকে চলে গেল কিন্তু তারা জানে না, সে কি পরিকল্পনা করেছে| 12 অহীথোফল দায়ূদের অন্যতম একজন পরামর্শদাতা ছিল| অহীথোফল ছিল গীলো শহরের লোক| অবশালোম যখন উত্সর্গ নিবেদন করেছিল তখন সে অহীথোফলকে তার শহর গীলো থেকে ডেকে পাঠাল| অবশালোমের ফন্দি খুব ভালভাবেই কার্য়করী হয়েছিল এবং বহু লোক তাকে সমর্থন করেছিল| 13 দায়ূদকে সংবাদ দিতে একজন লোক এলো| সে বলল, “ইস্রায়েলের লোকরা অবশালোমকে অনুসরণ করতে শুরু করেছে|” 14 তারপর দায়ূদ জেরুশালেমে বসবাসকারী তাঁর সব আধিকারিকদের বললেন, “আমরা পালিয়ে যাব| আমরা যদি পালিয়ে না যাই, অবশালোম আমাদের যেতে দেবে না| তাড়াতাড়ি কর, যেন অবশালোম আমাদের ধরতে না পারে| সে আমাদের এবং জেরুশালেমের সব লোককে মেরে ফেলবে|” 15 রাজার আধিকারিকরা তাঁকে বলল, “আপনি আমাদের যা বলবেন, আমরা তাই করব|” 16 রাজা দায়ূদ লোকজন সহ পালিয়ে গেলেন| রাজা তাঁর বাড়ী দেখাশোনা করার জন্য তাঁর দশজন উপপত্নীকে রেখে গেলেন| 17 রাজা চলে যেতে সব লোকরাও তাঁকে অনুসরণ করল| শেষ বাড়ীতে গিয়ে তারা থামল| 18 তাঁর সমস্ত আধিকারিক তাঁর সামনে দিয়ে হেঁটে সবলে গেল| করেথীয, পলেথীয এবং (গাতের 600 পুরুষ) রাজার সামনে দাঁড়াল| 19 রাজা গাতের ইত্তযকে বললেন, “কেন তুমিও আমাদের সঙ্গে যাচ্ছ? ফিরে যাও| নতুন রাজা অবশালোমের সঙ্গে য়োগ দাও| তুমি একজন ভিন্দেশী| এটা তোমার দেশ নয়| 20 কেবলমাত্র গতকাল তুমি আমাদের সঙ্গে য়োগ দিয়েছ| তুমি নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ঘুরে বেড়াবে না? তুমি তোমার ভাইদের নাও এবং যাও| তোমার প্রতি দয়া ও আনুগত্য প্রদর্শিত হোক্|” 21 কিন্তু ইত্তয রাজাকে উত্তর দিল, “আমি প্রভুর নামে শপথ নিয়ে বলছি, আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন আমি আপনার সঙ্গেই থাকব!” 22 দায়ূদ ইত্তযকে বললেন, “এসো, আমরা কিদ্রোণ স্রোত পার হয়ে যাই|”তখন গাতের ইত্তয এবং তার সব লোক তাদের ছেলে-মেয়েসহ কিদ্রোণ স্রোত পার হয়ে গেল| 23 সব লোকরা উচ্চৈস্বরে কাঁদছিল| রাজা দায়ূদ কিদ্রোণ স্রোত পার হয়ে গেলেন| তারপর সব লোক মরুভূমির পথে পা বাড়াল| 24 সাদোক এবং তার সঙ্গে অন্যান্য লেবীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল| তারা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নামিযে রাখল| যতক্ষণ পর্য়ন্ত না সব লোক জেরুশালেম ত্যাগ করল, ততক্ষণ পর্য়ন্ত অবিয়াথর পবিত্র সিন্দুকের পাশে দাঁড়িয়ে রইলেন এবং প্রার্থনা করলেন| 25 রাজা দায়ূদ সাদোককে বললেন, “ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক জেরুশালেমে নিয়ে যাও| প্রভু যদি আমার প্রতি প্রসন্ন হন, তিনি আবার আমায় জেরুশালেমে ফিরিযে আনবেন এবং আমাকে জেরুশালেম ও তাঁর আবাস স্থান দেখতে দেবেন| 26 আর যদি প্রভু আমার প্রতি প্রসন্ন না হন, তিনি আমার প্রতি তাঁর যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন|” 27 রাজা যাজক সাদোককে বললেন, “তুমিও একজন ভাববাদী| তুমি শান্তিতে নগরীতে ফিরে যাও| তোমার পুত্র অহীমাস এবং অবীযাথরের পুত্র য়োনাথনকে সঙ্গে নিয়ে এস| 28 মরুভূমিতে যাবার জন্য যে জায়গায় সবাই নদী পার হয়, সেখানে আমি তোমার কাছ থেকে কোন খবর না পাওয়া পর্য়ন্ত অপেক্ষা করব|” 29 সেই মত, সাদোক এবং অবীযাথর ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে রেখে দিল| 30 দায়ূদ জৈতূন পর্বতে উঠলেন| তিনি কাঁদছিলেন| তিনি মাথা ঢেকে খালি পাযে গেলেন| অন্যান্য সকলে মাথা ঢেকে দায়ূদের সঙ্গে গেল| তারাও কাঁদতে কাঁদতে দায়ূদের সঙ্গে গেল| 31 একজন লোক দায়ূদকে বলল, “যারা অবশালোমের সঙ্গে ফন্দি আঁটছে অহীথোফল তাদের মধ্যে একজন|” তখন দায়ূদ প্রার্থনা করলেন, “প্রভু আমরা তোমার কাছে প্রার্থনা করি তুমি অহীথোফলের চক্রান্ত ব্যর্থ কর|” 32 দায়ূদ পর্বতের শিখরে এলেন| এখান থেকে তিনি মাঝে মাঝে ঈশ্বরের উপাসনা করতেন| সেই সময় অকীয হূশয তাঁর কাছে এল| তার মাথায় ধূলোবালি এবং পরণে ছিন্নবস্ত্র| 33 দায়ূদ হূশযকে বললেন, “যদি তুমি আমার সঙ্গে যাও তাহলে আমাকে দেখাশোনা করবার জন্য তুমি হবে আর একজন ব্যক্তি| 34 কিন্তু যদি তুমি জেরুশালেমে ফিরে যাও তবে তুমি অহীথোফলের চক্রান্তকে ব্যর্থ করতে পারবে| অবশালোমকে গিয়ে বল, ‘হে রাজা আমি আপনার দাস| আমি আপনার পিতার সেবা করেছি| এখন আমি আপনার সেবা করব|’ 35 সাদোক এবং অবিয়াথর যাজকগণ তোমার সঙ্গে থাকবেন| রাজার বাড়ীতে তুমি যা যা শুনেছ, তুমি অবশ্যই তাদের সবই বলে দেবে| 36 সাদোকের পুত্র অহীমাস এবং অবিয়াথরের পুত্র য়োনাথন তাদের সঙ্গে থাকবে| তুমি রাজার প্রাসাদে যা কিছু শুনবে, তা ওদের মাধ্যমে আমাকে জানাতে থাকবে|” 37 তারপর দায়ূদের বন্ধু হূশয সেই শহরে চলে গেল| অবশালোমও জেরুশালেমে এল|
1 দায়ূদ জৈতুন পর্বতের চূড়ার দিকে যখন কিছুটা উঠেছেন, তখন মফীবোশতের ভৃত্য সীবঃ এর সঙ্গে দায়ূদের দেখা হল| সীবঃ এর গাধা দুটি তাদের পিঠে বস্তাভরা জিনিস বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল| তাতে 200টা রুটি, 100 থোকা কিস্মিস্, 100টা গ্রীষ্মের মরশুমী ফলসহ এক কূপা দ্রাক্ষারস ছিল| 2 রাজা দায়ূদ সীবঃকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই জিনিসগুলো কি কাজে লাগবে?”সীবঃ উত্তর দিল, “গাধাগুলি রাজপরিবারের লোকদের চড়ার জন্য| রুটি এবং গ্রীষ্মের ফলগুলো রাজার আধিকারিকদের খাওয়ার জন্য| মরুভূমির পথে কেউ যদি দুর্বল হয়ে পড়ে সে এই দ্রাক্ষারস পান করতে পারে|” 3 তখন রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “মফীবোশত্ কোথায?”সীবঃ উত্তর দিল, “মফীবোশত্ এখন জেরুশালেমে রযেছে| সে ভাবছে, ‘ইস্রায়েলীয়রা আজ আমার দাদুর রাজত্ব আমায় ফিরিযে দেবে|”‘ 4 তখন রাজা সীবঃকে বললেন, “সেই কারণে মফীবোশতের যা কিছু আছে তা আমি তোমাকে দিলাম|”সীবঃ বলল, “আমি আপনাকে প্রণাম করি| আমার বিশ্বাস, আমি সর্বদাই আপনাকে সন্তুষ্ট রাখতে পারব|” 5 দায়ূদ বহুরীমে এলেন| শৌলের পরিবারের একজন লোক বহুরীম থেকে এল| লোকটার নাম শিমিযি - সে গেরার পুত্র| শিমিযি দায়ূদের উদ্দেশ্যে অহিতকর কথা বলতে বলতে বেরিয়ে এল| এবং বার বার সে খারাপ কথাই বলতে থাকল| 6 শিমিযি দায়ূদ এবং তাঁর আধিকারিকদের দিকে পাথর ছুঁড়ছিল| কিন্তু সব লোক এবং সৈন্যরা দায়ূদকে ঘিরে দাঁড়াল এবং তাঁর চারদিকে জড়ো হল| 7 শিমিযি দায়ূদকে এই বলে অভিশাপ দিল: “বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও, তুমি একজন জঘন্য খুনী! 8 প্রভু তোমার শাস্তি দিচ্ছেন| কেন? কারণ তুমি শৌলের পরিবারের লোকদের মেরে ফেলেছ| তুমি চুরি করে শৌলের জায়গায় রাজা হয়ে বসেছ| এখন সেরকমই খারাপ কিছু তোমার নিজের ক্ষেত্রে ঘটছে| প্রভু তোমার রাজত্ব তোমার পুত্র অবশালোমকে দিয়েছেন| কেন? কারণ তুমি একজন খুনী|” 9 সরূযার পুত্র অবীশয রাজাকে বলল, “এই মরা কুকুরটা কেন আপনাকে অভিশাপ করবে? হে রাজা, প্রভু আমার, আমাকে যেতে দিন, আমি গিয়ে শিমিযির মুণ্ডু কেটে উড়িযে দিই|” 10 কিন্তু রাজা উত্তর দিলেন, “ওহে সরূযার পুত্র, এটা তোমার কোন ব্যাপার নয়| সে প্রকৃতই আমাকে অভিশাপ দিচ্ছে| কিন্তু প্রভু তাকে বলেছেন আমাকে অভিশাপ দিতে| প্রভু যা করেন সে বিষযে কে তাঁকে প্রশ্ন করতে পারে?” 11 দায়ূদ অবীশয এবং তাঁর ভৃত্যদের আরও বললেন, “দেখ, আমার নিজের পুত্র অবশালোম আমাকে হত্যা করতে চাইছে| বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর এই ব্যক্তির (শিমিযি) আমাকে হত্যা করার অনেক বেশী অধিকার আছে| ওকে একা ছেড়ে দাও| ওকে আমায় অভিশাপ দিয়ে যেতে দাও| প্রভু ওকে এই কাজ করতে বলেছেন| 12 হয়তো আমার প্রতি যা কিছু ভুল করা হয়েছে প্রভু তা দেখবেন| তাহলে শিমিযি আজ আমার বিরুদ্ধে যা যা খারাপ কথা বলেছে, প্রভু হয়তো তার জন্য আমাকে ভাল কিছু দেবেন|” 13 অতএব দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা রাস্তা দিয়ে পুনরায চলতে লাগল| কিন্তু শিমিযি দায়ূদকে অনুসরণ করতে থাকলো| রাস্তার অন্যদিক দিয়ে সে পাহাড়ের ধারে ধারে চলতে থাকলো| পথে যেতে যেতে শিমিযি দায়ূদের উদ্দেশ্যে খারাপ খারাপ কথা বলতে থাকলো| শিমিযি দায়ূদের উদ্দেশ্যে পাথর এবং কাদা ছুঁড়তে লাগল| 14 রাজা দায়ূদ এবং তাঁর সব লোকরা যর্দন নদীর কাছে এসে পৌঁছলেন| রাজা এবং তাঁর লোকরা খুব ক্লান্ত ছিলেন| তাঁরা সেখানে বিশ্রাম নিয়ে নিজেদের খানিকটা চাঙ্গা করে নিলেন| 15 অবশালোম, অহীথোফল এবং ইস্রায়েলের সব লোক জেরুশালেমে এল| 16 দায়ূদের বন্ধু অকীয হূশয অবশালোমের কাছে এল| হূশয অবশালোমকে বলল, “রাজা দীর্ঘজীবী হোক্! রাজা দীর্ঘজীবী হোক্!” 17 অবশালোম উত্তর দিল, “তুমি তোমার বন্ধু দায়ূদের প্রতি একনিষ্ঠ নও কেন? তুমি তোমার বন্ধুর সঙ্গে জেরুশালেম থেকে চলে গেলে না কেন?” 18 হূশয বলল, “প্রভু যাকে বেছে নেন আমি তো তারই| লোকরা এবং ইস্রায়েলের সব লোকরা আপনাকে বেছে নিয়েছে| আমি আপনার সঙ্গে অবশ্যই থাকব| 19 অতীতে আমি আপনার পিতার সেবা করেছি| অতএব এখন আমি দায়ূদের পুত্রের সেবা করব| আমি আপনারই সেবা করব|” 20 অবশালোম অহীথোফলকে জিজ্ঞাসা করল, “বল, এখন কি করা উচিত্|” 21 অহীথোফল অবশালোমকে বলল, “তোমার পিতা এখানে ঘর-বাড়ী দেখাশোনা করার জন্য তাঁর কযেকজন উপপত্নীদের রেখে গেছেন| যাও এবং তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন কর| তখন সব ইস্রাযেলী জানবে তোমার পিতা তোমাকে ঘৃণা করে| তোমার সব লোকরা তোমাকে সমর্থন করতে উত্সাহিত হবে এবং তোমাকে তাদের পূর্ণ সমর্থন দেবে|” 22 তখন তারা বাড়ীর ছাদে অবশালোমের জন্য একটা তাঁবু ফেলল| অবশালোম তার পিতার উপপত্নীদের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক করল| সব ইস্রায়েলীয়ই তা দেখল| 23 সেই সময় থেকে অহীথোফলের উপদেশ অবশালোম এবং দায়ূদ উভয়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল| তা ছিল মানুষের কাছে ঈশ্বরের বাক্যের মতই গুরুত্বপূর্ণ|
1 অহীথোফল অবশালোমকে বলল, “আমাকে 12,000 লোক বেছে নিতে দাও| আজ রাতেই আমি দায়ূদকে তাড়া করব| 2 যখন সে ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে যাবে তখন আমি তাকে ধরব| আমি তাকে ভীত ও আতঙ্কিত করে তুলব| তার সব লোকরা দৌড়ে পালিয়ে যাবে| কিন্তু আমি শুধু রাজা দায়ূদকেই হত্যা করব| 3 তারপর আমি সব লোককে তোমার কাছে ফিরিযে নিয়ে আসব| যদি দায়ূদ মারা যায়, তাহলে সব লোকরা শান্তিতে ফিরে আসবে|” 4 অবশালোম এবং ইস্রায়েলের সব নেতার কাছেই এই প্রস্তাব ভাল বলে মনে হল| 5 কিন্তু অবশালোম বলল, “এখন আমি অকীয হূশযকে ডাকি| সে কি বলে তাও আমি শুনতে চাই|” 6 হূশয অবশালোমের কাছে এল| অবশালোম হূশযকে বলল, “অহীথোফল এই পরামর্শ দিয়েছে| আমরা কি এটাই অনুসরণ করব? তা যদি না হয় তাহলে বল কি করা উচিত্?” 7 হূশয অবশালোমকে বলল, “অহীথোফলের উপদেশ এই সমযে উপযোগী নয়|” 8 হূশয আরও বলল, “তুমি জানো যে তোমার পিতা এবং তার লোকরা খুবই শক্তিশালী| বাচ্চা কেড়ে নিলে বুনো ভাল্লুক যেমন হিংস্র হয়ে ওঠে ওরাও তেমনিই ভয়ঙ্কর| তোমার পিতা একজন দক্ষ য়োদ্ধা| তিনি কখনও সারারাত ওই লোকদের সঙ্গে থাকবেন না| 9 সম্ভবতঃ তিনি কোন গুহা বা অন্য কোথাও ইতিমধ্যে লুকিয়ে পড়েছেন| যদি তোমার পিতা তোমার লোকদের আগে আক্রমণ করে, লোক এই সংবাদ জানতে পারবে| এবং তারা ভাববে, ‘অবশালোমের লোকরা হেরে যাচ্ছে!’ 10 তখন সিংহের মত সাহসী য়োদ্ধারাও ভীত ও আতঙ্কিত হবে| কেন? কারণ গোটা ইস্রাযেল এই কথা জানে যে তোমার পিতা শক্তিশালী য়োদ্ধা এবং তাঁর লোকরা অত্যন্ত সাহসী| 11 “আমার প্রস্তাব হল এই; তুমি অবশ্যই দান থেকে বের্-শেবা পর্য়ন্ত সব ইস্রায়েলীয়দের একসঙ্গে জড়ো করবে| সমুদ্রে যেমন অগুনতি বালি থাকে সেরকমই সেখানে অনেক লোক হবে| তারপর, তুমি নিজে অবশ্যই যুদ্ধে যাবে| 12 দায়ূদ যেখানে লুকিয়ে আছে সেখানেই আমরা তাকে ধরব| অগণিত সৈন্যসহ আমরা দায়ূদকে আক্রমণ করব| ভূমিকে ঢেকে দেওয়া অসংখ্য় শিশির কণার মত আমরা ওদের ঢেকে দেব| আমরা দায়ূদ এবং তাঁর লোকদের হত্যা করব| কাউকে জীবিত ছাড়া হবে না| 13 যদি দায়ূদ নগরের ভিতরে পালিয়ে যান সকল ইস্রায়েলীয় মিলে দড়ি দিয়ে আমরা নগরের প্রাচীর ভেঙ্গে দেব| তাদের সবাইকে আমরা উপত্যকায টেনে নামাব| নগরের একটা ছোট্ট পাথর পর্য়ন্ত আমরা রাখতে দেব না|” 14 অবশালোম এবং সকল ইস্রায়েলীয় বলল, “অকীয হূশযের উপদেশ অহীথোফলের উপদেশের চেয়ে ভাল|” তারা একথা বলল কারণ তা ছিল প্রভুর পরিকল্পনা| অবশালোমকে শাস্তি দেবার জন্য প্রভু অহীথোফলের সত্ উপদেশকে বিফল করার ফন্দি এঁছেিলেন| 15 ঐ সব কথা হূশয সাদোক এবং অবীযাথর এই দুই যাজকদের বলল| অহীথোফল অবশালোম এবং ইস্রায়েলের নেতাদের যে পরামর্শ দিয়েছে হূশয তাও বলল| হূশয নিজে যা যা পরামর্শ দিয়েছিল তাও তাদের বলল| হূশয বলেছিল, 16 “খুব শীঘ্র দায়ূদকে এই খবর দাও| তাঁকে বল, যেখান দিয়ে নদী পার হয়ে লোকে মরুভূমিতে ঢোকে তিনি যেন সেখানে আজ রাতে না থাকেন| তাঁকে এখুনি যর্দন নদী পার হয়ে যেতে বল| যদি তিনি নদী পার হয়ে চলে যান তবে রাজা এবং তাঁর লোকরা ধরা পড়বে না|” 17 যাজকের দুই পুত্র য়োনাথন এবং অহীমাস ঐন্-রোগেলে অপেক্ষা করছিল| তারা চাইত না কেউ তাদের শহরে প্রবেশ করতে দেখুক| শুধুমাত্র এক দাসী এসে তাদের সব খবরাখবর দিয়ে যেত| তারপর য়োনাথন এবং অহীমাস রাজা দায়ূদের কাছে গিয়ে সব কথা বলত| 18 কিন্তু এক বালক য়োনাথন এবং অহীমাসকে দেখে ফেলল| এই ঘটনা অবশালোমকে বলার জন্য বালকটি ছুটে চলে গেল| য়োনাথন এবং অহীমাসও তাড়াতাড়ি দৌড়ে পালাল এবং বহুরীমে এক লোকর বাড়ীতে এসে উপস্থিত হল| লোকটার বাড়ীর বাইরের প্রাঙ্গণে একটা কুযো ছিল| য়োনাথন এবং অহীমাস সেই কুযোতে নেমে গেল| 19 সেই লোকটির স্ত্রী কুযোর ওপর একটা আচ্ছাদন রেখে দিল| তারপর সে সেই কুযোর ওপর গমের বীজ বিছিযে দিল, তাই সেটি শস্যের স্তুপের মতই দেখতে লাগছিল| তাই লোকরা জানতে পারল না যে য়োনাথন এবং অহীমাস তার মধ্যে লুকিয়ে রযেছে| 20 অবশালোমের ভৃত্যরা সেই বাড়ীতে এসে সেই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করল, “অহীমাস এবং য়োনাথন কোথায?”মহিলা অবশালোমের ভৃত্যদের বলল, “ইতিমধ্যেই তারা নদী পার হয়ে গেছে|”তখন অবশালোমের ভৃত্যরা য়োনাথন ও অহীমাসের সন্ধানে চলে গেল| কিন্তু তারা তাকে খুঁজে পেল না| অতঃপর অবশালোমের ভৃত্যরা জেরুশালেমে ফিরে এল| 21 অবশালোমের ভৃত্যরা চলে যাওয়ার পর, য়োনাথন ও অহীমাস কুযো থেকে বাইরে বেরিয়ে এল| তারা রাজা দায়ূদের কাছে গেল এবং দায়ূদকে বলল, “খুব তাড়াতাড়ি নদী পার হয়ে চলে যান| অহীথোফল আপনার বিরুদ্ধে এই সব ষড়যন্ত্র করেছে|” 22 তখন দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা যর্দন নদী পার হয়ে গেল| সূর্য়োদযের আগেই দায়ূদের সব লোকরা যর্দন নদী পার হয়ে গেল| 23 অহীথোফল দেখল যে তার উপদেশ ইস্রায়েলীয়রা গ্রহণ করে নি| সে তার গাধার পিঠে জিন চড়িযে তার নিজের নগরে ফিরে এল| তার পরিবারের যথাবিহিত ব্যবস্থা করে সে গলায দড়ি দিল| অহীথোফল মারা গেলে লোকরা তাকে তার পিতার কবরেই কবর দিল| 24 দায়ূদ মহনযিমে এলেন|অবশালোম এবং তার সঙ্গে যে সব ইস্রায়েলীয়রা ছিল তারা যর্দন নদী পার হয়ে গেল| 25 অবশালোম অমাসাকে তার সৈন্যদলের অধিনাযকরূপে নিযুক্ত করল| অমাসা য়োয়াবের জায়গা নিল| অমাসা ছিল য়িথ্র, একজন ইস্মাযেলীযছেলে| অমাসার মাযের নাম অবীগল| সে সরূযার বোন নাহশের মেয়ে| সরূযা ছিল য়োয়াবের মা| 26 অবশালোম এবং ইস্রায়েলীয়রা গিলিয়দে তাঁবু ফেলে অবস্থান করল| 27 দায়ূদ মহনযিমে এলেন| শোবি, মাখীর এবং বর্সিল্লয সেইখানেই ছিল| শোবি অম্মোনদের রব্বা শহরের নাহশের পুত্র| মাখীর হল লোদবার নিবাসী অম্মীযেলের পুত্র| আর বর্সিল্লয গিলিয়দের, রোগলীমের থেকে এসেছিল| 28 সেই তিনজন লোক বলল, “মরুভূমিতে যে লোকরা রযেছে তারা ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত|” তাই তারা দায়ূদের জন্য এবং তাঁর সঙ্গে যে লোকরা ছিল তাদের জন্য অনেক কিছু জিনিস এনেছিল| তারা বিছানা এবং অন্যান্য পাত্রাদি এনেছিল| এছাড়াও তারা গম, যব, মযদা, ভাজা শস্য, বীন, শাক, শুকনো বীজ, মধু, মাখন, মেষ এবং পনীর এনেছিল| 29
1 দায়ূদ তাঁর লোকদের একবার গুনে নিলেন| তিনি 1000 জন এবং 100 জন করে লোক ভাগ করে প্রতিটি দলের জন্য একজন অধিনাযক নিযুক্ত করলেন| 2 দায়ূদ তাঁর লোকদের তিনটে দলে ভাগ করে দিলেন এবং তারপর তাদের পাঠিয়ে দিলেন| য়োয়াব এক তৃতীয়াংশ লোকর নেতৃত্বে ছিল| য়োয়াবের ভাই সরূযার পুত্র অবীশয অপর একভাগ লোককে নেতৃত্ব দিয়েছিল| এবং গাতের ইত্তয বাকী অংশের নেতৃত্বে ছিল|রাজা দায়ূদ তাঁদের বললেন, “আমিও তোমাদের সঙ্গে যাব|” 3 কিন্তু লোকরা বলে উঠল, “না! আপনি আমাদের সঙ্গে একদম আসবেন না| কেন? কারণ আমরা যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাই, তাহলে অবশালোমের লোকরা ধর্তব্য়ের মধ্যেই আনবে না| এমনকি, আমাদের অর্ধেক লোক যদি মারাও যায় তাতেও অবশালোমের লোকদের কিছু এসে যাবে না, কিন্তু আপনি আমাদের 10,000 লোকর সমান| তাই আপনার পক্ষে শহরে থাকাই ভাল| তখন আমরা সাহায্য চাইলে আপনি আমাদের সাহায্য করতে পারবেন|” 4 রাজা তাদের বললেন, “তোমরা যা ভাল বোঝ আমি তাই করব|”তখন রাজা ফটকের একদিকে দাঁড়ালেন| সৈন্যবাহিনী বেরিয়ে গেল| শ’যে শ’যে এবং হাজারে হাজারে সেনাবাহিনী বেরিয়ে এল| 5 য়োয়াব, অবীশয এবং ইত্তযকে রাজা আদেশ দিলেন| তিনি বললেন, “আমার মুখ চেয়ে তোমরা এই কাজ কর| তরুণ অবশালোমের সঙ্গে সংযত ও ভাল আচরণ কর|”সব লোক দাঁড়িয়ে শুনল যে অধিনাযকের প্রতি অবশালোম সম্পর্কে রাজা আদেশ দিলেন| 6 অবশালোমের পক্ষের ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দায়ূদের সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে রওনা হল| তারা ইফ্রয়িমের অরণ্যে যুদ্ধ করল| 7 দায়ূদের লোকরা ইস্রায়েলীয়দের পরাজিত করল| সেদিন 20,000 সৈন্যকে হত্যা করা হয়েছিল| 8 সারা দেশে সেই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল| কিন্তু সে দিন যুদ্ধক্ষেত্রের চেয়ে অরণ্যেই বেশী লোক মারা গিয়েছিল| 9 এমন হল যে অবশালোম দায়ূদের আধিকারিকদের মুখোমুখি হল| অবশালোম তার খচ্চরের ওপর লাফিযে পড়ে পালাতে চেষ্টা করল| খচ্চরটা একটা বড় ওক গাছের ডালের তলা দিয়ে যেতে চেষ্টা করল| অবশালোমের মাথাটা গাছের ডালে আটকে গেল| খচ্চরটা তলা দিয়ে পালিয়ে গেল| আবশালোম গাছের ডালে ঝুলে রইল| 10 একজন ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটতে দেখল| সে য়োয়াবকে বলল, “আমি অবশালোমকে একটা ওক গাছে ঝুলতে দেখেছি|” 11 য়োয়াব তাকে জিজ্ঞাসা করল: “কেন তুমি তাকে হত্যা করলে না এবং তাকে মাটিতে ফেলে দিলে না? তাহলে আমি তোমাকে একটা কোমরবন্ধ ও দশটা রৌপ্য় মুদ্রা দিতাম|” 12 ব্যক্তিটি য়োয়াবকে বলল, “তুমি আমাকে 1,000 রজত মুদ্রা দিলেও আমি রাজার পুত্রকে আঘাত করার চেষ্টা করতাম না| কেন? কারণ তোমার প্রতি অবীশয এবং ইত্তযের প্রতি রাজার আদেশ শুনেছি| রাজা বলেছেন দেখো, ‘তরুণ অবশালোমকে আঘাত করো না|’ 13 যদি আমি অবশালোমকে হত্যা করতাম রাজা নিজেই আমাকে খুঁজে বের করতেন এবং তুমি আমাকে শাস্তি দিতে|” 14 য়োয়াব বলল, “তোমার সঙ্গে এখানে আমি সময় নষ্ট করব না|”অবশালোম তখনও দেবদারু গাছে ঝুলে ছিল এবং তখনও বেঁচ্ছেিল| য়োয়াব তিনটে বর্শা নিয়ে অবশালোমের দিকে ছুঁড়ে দিল| বর্শাগুলি অবশালোমের বুক বিদীর্ণ করে দিল| 15 দশজন তরুণ সৈন্য য়োয়াবকে যুদ্ধে সাহায্য করত| তারা দশজনে মিলে অবশালোমকে ঘিরে দাঁড়াল ও তাকে হত্যা করল| 16 য়োয়াব তূর্য় বাজাল এবং তার লোকদের ইস্রায়েলীয়দের তাড়া না করতে আদেশ দিল| 17 তারপর য়োয়াবের লোকরা অবশালোমের দেহটি জঙ্গলের খাদে ফেলে দিল| সেই খাদটি তারা বড় বড় পাথর দিয়ে বুজিযে দিল|সব ইস্রায়েলীয় যারা অবশালোমকে অনুসরণ করছিল তারা পালিয়ে গিয়ে যে যার বাড়ী চলে গেল| 18 অবশালোমের জীবনকালে রাজার উপত্যকায সে একটা স্তম্ভ তৈরী করেছিল এবং সেটা নিজের নামে নাম দিয়েছিল কারণ সে ভেবেছিল: “আমার নাম রক্ষা করার জন্য আমার কোন সন্তানাদি নেই|” আজও স্তম্ভটিকে “অবশালোমের স্তম্ভ” বলা হয়| 19 সাদোকের পুত্র অহীমাস য়োয়াবকে বলল, “আমাকে দৌড়ে গিয়ে রাজা দায়ূদকে এই খবর জানাতে দাও| আমি তাঁকে বলব আপনার জন্য প্রভু আপনার শত্রুকে হত্যা করেছেন|” 20 য়োয়াব অহীমাসকে উত্তর দিল, “না, আজ এই খবর তুমি রাজা দায়ূদকে দেবে না| অন্যদিনে তুমি এই খবর দিতে পার কিন্তু আজ নয়| কেন? কারণ রাজার ছেলে মারা গেছে|” 21 তখন য়োয়াব কূশীয়কে বলল, “যাও এবং তুমি যা যা দেখেছ তা রাজাকে বল|”তখন সেই কূশীয় য়োয়াবকে প্রণাম করে রাজা দায়ূদের উদ্দেশ্যে রওনা হল| 22 কিন্তু সাদোকের পুত্র অহীমাস আবার য়োয়াবের কাছে অনুরোধ করল, “যা ঘটে গেছে তা নিয়ে চিন্তিত হযো না, আমাকেও ঐ কূশীয়র পিছনে ছুটে যেতে দাও!” য়োয়াব জিজ্ঞাসা করল, “পুত্র, কেন তুমি এই সংবাদ নিয়ে যেতে চাইছ? এই সংবাদের জন্য তুমি কোন পুরস্কার পাবে না|” 23 অহীমাস উত্তর দিল, “যাই ঘটুক না কেন তা নিয়ে চিন্তা করি না| আমি দায়ূদের কাছে দৌড়ে যাব|”য়োয়াব অহীমাসকে বলল, “ভাল, দায়ূদের কাছে দৌড়ে যাও|”তখন অহীমাস যর্দন উপত্যকার মধ্যে দিয়ে দৌড়লো এবং কূশীয় বার্তাবাহককে অতিক্রম করে গেল| 24 শহরের দুই সিংহদ্বারের মাঝামাঝি দায়ূদ বসেছিলেন| একজন প্রহরী সিংহদ্বার সংলগ্ন প্রাচীরের ওপর উঠে দেখল একজন লোক একা দৌড়োচ্ছে| 25 প্রহরী চিত্কার করে দায়ূদকে সে কথা বলল| রাজা দায়ূদ বললেন, “যদি লোকটা একা হয় তা হলে সে সংবাদ নিয়ে আসছে|”লোকটা ক্রমে নগরের কাছে এসে গেল| 26 তখন প্রহরী দেখল আরও একজন দৌড়ে আসছে| প্রহরী দ্বাররক্ষীকে ডেকে বলল, “দেখ আরও একজন লোক একা ছুটে আসছে|”রাজা বললেন, “ওই লোকটিও সংবাদ নিয়ে আসছে|” 27 প্রহরী বলল, “আমার মনে হয় প্রথম লোকটি সাদোকের পুত্র অহীমাসের মত দৌড়োয|”রাজা বলল, “সে একজন ভাল লোক| সে নিশ্চয়ই শুভ সংবাদ নিয়ে আসছে|” 28 অহীমাস রাজাকে বলল, “সবই কুশল!” অহীমাস রাজাকে প্রণাম করল এবং তাঁকে বলল, “ আপনার প্রভু, ঈশ্বরের প্রশংসা করুন! হে আমার মনিব, যারা আপনার বিরোধী ছিল প্রভু তাদের পরাজিত করেছেন|” 29 রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “অবশালোম কেমন আছো?”অহীমাস উত্তর দিল, “য়োয়াব যখন আমাকে পাঠিয়েছিল, আমি একদল লোককে দেখেছিলাম এবং তারা বিভ্রান্ত ছিল| কিন্তু কি ব্যাপারে সে উত্তেজিত তা আমি জানি না|” 30 তখন রাজা বললেন, “তুমি একটু সরে দাঁড়াও এবং অপেক্ষা কর|” অহীমাস সরে গেল এবং দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করল| 31 সেই কূশীয় এল| সে বলল, “হে আমার প্রভু এবং রাজা, আপনার জন্য সংবাদ আছে| যারা আপনার বিরুদ্ধে ছিল প্রভু তাদের আজ শাস্তি দিয়েছেন|” 32 রাজা সেই কূশীয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “অবশালোম ভালো আছো তো?”কূশীয়টি উত্তর দিল, “আপনার শত্রুরা এবং সেইসব লোকরা যারা আপনাকে আঘাত করবার চেষ্টা করছে তাদের যেন শাস্তি হয় এবং তাদের ভাগ্য যেন অবশালোমের মত হয় আমি এই কামনা করি|” 33 তখন রাজা জানতে পারলেন অবশালোম মারা গেছে| রাজা ভীষণভাবে ভেঙ্গে পড়লেন| শহরে সিংহদ্বারের ওপর ঘরে গিয়ে কাঁদলেন| সেই সবচেয়ে ওপর তলায় যেতে যেতে তিনি বিলাপ করে কাঁদতে লাগলেন, “হায অবশালোম! হায আমার পুত্র অবশালোম! তোমার বদলে যদি আমি মরতাম! হাযরে অবশালোম! হায আমার পুত্র!”
1 লোকরা য়োয়াবকে এসে সংবাদ দিয়ে বলল, “রাজা দায়ূদ অবশালোমের জন্য দুঃখে ভেঙ্গে পড়েছেন এবং কাঁদছেন|” 2 সেদিন দায়ূদের সৈন্যরা যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল| কিন্তু সেই জয় তাদের সকলের কাছে একটা বিষাদের দিন হয়ে উঠেছিল| তা বিষন্নতার দিন ছিল কারণ লোকরা জানতে পারল, “রাজা তার পুত্রের জন্য শোকমগ্ন|” 3 লোকরা বিমর্ষ হয়ে সেই শহরে এল| তারা যুদ্ধে যারা পরাজিত হয়েছে এবং লজ্জায যারা ছুটে পালিয়ে গেছে সেই লোকদের মত ব্যবহার করল| 4 রাজা তাঁর মুখ ঢেকে রেখেছিলেন| তিনি উচ্চস্বরে কাঁদছিলেন, “অবশালোম, অবশালোম, হায পুত্র, পুত্র আমার!” 5 য়োয়াব রাজার প্রাসাদে গেল| সে রাজাকে বলল, “আপনি আপনার প্রত্যেকটি আধিকারিকদের অবমাননা করছেন| দেখুন ঐ আধিকারিকরা আজ আপনার প্রাণ বাঁচিয়েছে| তারা আপনার ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী এবং দাসীদেরও প্রাণ বাঁচিয়েছে| 6 যারা আপনাকে ঘৃণা করে তাদের আপনি ভালোবাসেন এবং যারা আপনাকে ভালোবাসে তাদের আপনি ঘৃণা করেন| আপনি আজ পরিষ্কার করে বুঝিযে দিলেন যে আপনার আধিকারিক এবং অন্যান্য লোকরা আপনার কাছে একান্তই অর্থহীন| আমি বুঝতে পারছি আমরা সকলে মারা গিয়ে অবশালোম বেঁচে থাকলে আপনি প্রকৃতই সুখী হতেন| 7 এখন উঠুন, আপনার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলুন| ওদের উত্সাহিত করুন| আমি প্রভুর নামে শপথ করে বলছি, যদি আপনি এখনই বাইরে গিয়ে এই কাজ না করেন, আজ রাতে আপনার সঙ্গে একজন লোককেও পাবেন না| এবং তা যদি হয় তাহলে শৈশবকাল থেকে আপনি যে সব সমস্যায় পড়েছেন, এটা হবে তাদের তুলনায় কঠিনতম সমস্যা|” 8 তখন রাজা গিয়ে নগরীর প্রবেশ পথে বসলেন| রাজা যে নগরদ্বারের বাইরে এসেছেন এই খবর ছড়িয়ে পড়ল| তাই লোকরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এল|ইস্রায়েলীয়রা যারা অবশালোমকে অনুসরণ করছিল তারা সকলে দৌড়ে পালিয়ে যে যার বাড়ী চলে গেল| 9 প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকটি লোক নিজেদের মধ্যে কলহ শুরু করে দিল| তারা বলল, “রাজা দায়ূদ আমাদের পলেষ্টীয় এবং অন্যান্য শত্রুদের থেকে বাঁচিয়েছেন| দায়ূদ অবশালোমের হাত থেকে পালিয়ে গেছেন| 10 তাই আমরা অবশালোমকে আমাদের শাসকরূপে বেছে নিয়েছিলাম| কিন্তু এখন অবশালোম মারা গেছে| সে যুদ্ধে হত হয়েছে| তাই দায়ূদকে আমরা আবার রাজা হিসেবে গ্রহণ করব|” 11 রাজা দায়ূদ সাদোক এবং অবিয়াথর এই দুই যাজককে বার্তা পাঠালেন| দায়ূদ বললেন, “যিহূদার নেতাদের সঙ্গে কথা বল| তাদের বল, “রাজা দায়ূদকে তাঁর প্রাসাদে ফিরিযে আনার ব্যাপারে তোমরা সব চেয়ে শেষ পরিবারগোষ্ঠী কেন? দেখ, সারা ইস্রায়েলের লোক রাজা দায়ূদকে তাঁর স্বস্থানে ফিরিযে আনার ব্যাপারে বলাবলি করছে| 12 তোমরা আমার ভাই, তোমরাই আমার পরিবার| তবে রাজাকে স্বস্থানে ফিরিযে আনার ব্যাপারে কেন তোমরা পিছিযে থাকা পরিবার হবে?” 13 অমাসাকে গিয়ে বল, ‘তুমি আমার পরিবারের একজন| যদি আমি তোমাকে য়োয়াবের জায়গায় আমার সৈনিকদের সেনাপতি না করি, তবে ঈশ্বর যেন আমায় শাস্তি দেন|”‘ 14 দায়ূদ যিহূদার সব লোকর হৃদয় স্পর্শ করলেন এবং তারা সকলে একাত্ম হয়ে সম্মতি জানাল| যিহূদার লোকরা রাজার কাছে বার্তা পাঠাল| তারা বলল, “আপনি এবং আপনার সব আধিকারিকরা ফিরে আসুন|” 15 রাজা দায়ূদ যর্দন নদীর কাছে এলেন| যিহূদার লোকরা রাজার সঙ্গে দেখা করার জন্য এবং তাঁকে যর্দন নদী পার করে নিয়ে যাবার জন্য গিল্গলে এসে উপস্থিত হল| 16 গেরার পুত্র শিমিযি বিন্যামীনের পরিবারের একজন| সে বহুরীমে বাস করত| দায়ূদের সঙ্গে দেখা করার জন্য সে তাড়াতাড়ি এল| সে যিহূদার লোকদের সঙ্গে এল| 17 শিমিযির সঙ্গে বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে আরও 1,000 জন লোক এসেছিল, শৌলের পরিবারের দাস সীবঃও এসেছিলো| সীবঃ তার 15 জন পুত্র এবং 20 জন ভৃত্যকে সঙ্গে এনেছিল| এই সব লোক রাজা দায়ূদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাড়াতাড়ি যর্দন নদীর তীরে এসে উপস্থিত হল| 18 রাজার পরিবারকে যিহূদায় ফিরিযে আনার জন্য লোকরা সাহায্য করতে নদীর ওপারে চলে গেল| রাজা যা যা বললেন লোকরা তাই করল| যখন রাজা নদী পার হচ্ছেন তখন গেরার পুত্র শিমিযি তার সঙ্গে দেখা করতে এল| শিমিযি এসে রাজাকে প্রণাম করল| 19 শিমিযি রাজাকে বলল, “হে আমার প্রভু, আমি যা ভুল করেছি তা নিয়ে ভাববেন না| হে রাজা, যখন আপনি জেরুশালেম ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তখন আপনার সঙ্গে যে যে খারাপ আচরণ করেছি তা আর মনে রাখবেন না| 20 আপনি জানেন আমি পাপ করেছি| সেই জন্যই য়োষেফের পরিবার থেকে আমিই প্রথম আপনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি|” 21 কিন্তু সরূযার পুত্র অবীশয বলল, “আমরা শিমিযিকে অবশ্যই হত্যা করব কারণ প্রভুর দ্বারা অভিষিক্ত রাজাকে সে অভিশাপ দিয়েছিল|” 22 দায়ূদ বললেন, “সরূযার পুত্র, তোমার কি ব্যাপার বলত, যে তুমি আমার বিরুদ্ধাচরণ করছ? ইস্রায়েলে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না| আজ আমি জানি যে আমি সমগ্র ইস্রায়েলের রাজা|” 23 তখন রাজা শিমিযিকে বললেন, “তোমাকে হত্যা করা হবে না|” রাজা শিমিযির কাছে প্রতিজ্ঞা করলেন যে তিনি নিজে শিমিযিকে হত্যা করবেন না| 24 শৌলের বড় নাতি মফীবোশত্ রাজা দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে এল| রাজা জেরুশালেম ত্যাগ করা থেকে নিশ্চিন্তে ফিরে আসা পর্য়ন্ত মফীবোশত্ তার পাযের যত্ন নেয নি, দাড়ি কামায নি, এমনকি কাপড়ও ধোয নি| 25 মফীবোশত্ যখন জেরুশালেমে রাজার সঙ্গে দেখা করল তখন রাজা বললেন, “যখন আমি জেরুশালেম থেকে চলে গেলাম তখন তুমি আমার সঙ্গে গেলে না কেন?” 26 মফীবোশত্ উত্তর দিল, “হে আমার মনিব, আমার দাস আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে| আমি পঙ্গু তাই আমি আমার দাস সীবঃকে বলেছিলাম, ‘আমার গাধার পিঠে একটা জিন পরিযে দাও| আমি তাতে চড়ে রাজার সঙ্গে যাব|’ 27 কিন্তু আমার দাস আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে| সে একাই আপনার কাছে এসেছে এবং আমার সম্পর্কে আপনার কাছে নিন্দাবাদ করেছে| হে আমার প্রভু, আপনি ঈশ্বরের দূতের মত| যা ভালো মনে হয় আপনি তাই করুন| 28 আপনি আমার দাদূর পরিবারের সব লোককেই মেরে ফেলতে পারতেন| কিন্তু আপনি তা করেন নি| বরং আপনি আমাকে তাদের সঙ্গে স্থান দিয়েছেন যারা আপনার সঙ্গে একাসনে বসে আহার করে| অতএব কোন বিষযেই রাজার কাছে কোন অভিয়োগ করার অধিকার আমার নেই|” 29 রাজা মফীবোশতকে বললেন, “তোমার সমস্যা সম্পর্কে আর বেশী কিছু বলো না| আমি স্থির করেছি; তুমি এবং সীবঃ জমি ভাগ করে নেবে|” 30 মফীবোশত্ রাজাকে বললেন, “হে আমার রাজা, হে প্রভু, আপনি যে নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরে এসেছেন এই আমার কাছে য়থেষ্ট| জমি সীবঃকেই নিতে দিন|” 31 বর্সিল্লয গিলিয়দীয রোগলীম থেকে ফিরে এল| সে দায়ূদের সঙ্গে যর্দন নদীর ধার পর্য়ন্ত এল| সে নদীর অপর পার পর্য়ন্ত রাজাকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাবে| 32 বর্সিল্লয অত্যন্ত বৃদ্ধ ছিল| তার বয়স 80 বছর| দায়ূদ যখন মহনযিমে ছিলেন তখন সে তাকে খাবার এবং অন্যান্য দ্রব্যাদি দিয়েছিল| বর্সিল্লয এই সব করতে পেরেছিল কারণ সে বেশ ধনী ব্যক্তি ছিল| 33 দায়ূদ বর্সিল্লযকে বললেন, “আমার সঙ্গে নদীর অন্য পাড়ে এস| যদি তুমি আমার সঙ্গে জেরুশালেমে থাক আমি তোমার বিষযে যত্ন নেব|” 34 কিন্তু বর্সিল্লয রাজাকে বলল, “আপনি কি জানেন আমার বয়স কত? 35 আমার বয়স 80 বছর| আমি য়থেষ্ট বৃদ্ধ, তাই ভাল মন্দ কোনটাই বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়| এমনকি আমার পান-আহারের স্বাদ কি তা বলাও আমার পক্ষে অসম্ভব| নারী বা পুরুষের গানের সুরও আমি আর শুনতে পাই না| কেন আপনি আমাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে সমস্যায় পড়তে চাইছেন? 36 আপনি আমাকে যা যা দিতে চান তার কিছুরই আমার প্রযোজন নেই| আমি আপনার সঙ্গে যর্দন নদী পার হয়ে যাব| 37 দয়া করে আমাকে বাড়ী ফিরে যেতে দিন| তাহলে আমি আমার নিজের শহরে মরতে পারব এবং আমার মাতা-পিতার কবরেই সমাধিপ্রাপ্ত হতে পারব| হে আমার মনিব এবং রাজা, কিম্হম আপনার ভৃত্য হতে পারে| তাকে আপনার সঙ্গে যেতে দিন| তার সঙ্গে আপনি যেমন খুশি ব্যবহার করবেন|” 38 রাজা উত্তর দিলেন, “কিম্হম আমার সঙ্গে ফিরে যাবে| তোমার জন্য আমি ওর প্রতি সদয হব| তুমি যা বলবে তোমার জন্য আমি তাই করব|” 39 রাজা বর্সিল্লযকে চুমু খেলেন এবং আশীর্বাদ করলেন| বর্সিল্লয ঘরে ফিরে গেল| রাজা এবং তাঁর সব লোক নদী পার হয়ে গেল| 40 রাজা নদী পার হয়ে গিল্গলে গেলেন| কিম্হম তাঁর সঙ্গে গেল| যিহূদার সব লোক এবং ইস্রায়েলের অর্ধেক লোক দায়ূদকে নদী পার করে নিয়ে গেল| 41 সব ইস্রায়েলীয় রাজার কাছে এল| তারা রাজাকে বলল, “আমাদের যিহূদাবাসী ভাইরা কেন আপনাকে চুরি করে আনল এবং আপনার লোকজন সহ আপনার পরিবারের সকলকে যর্দন নদী পার করিযে নিয়ে এল| কেন? 42 যিহূদার সব লোক ইস্রায়েলীয়দের উত্তর দিল, “কারণ রাজা আমাদের নিকট আত্মীয| রাজার ব্যাপারে কেন তোমরা আমাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হচ্ছ? আমরা রাজার পয়সায কিছু খাই নি| রাজা আমাদের কোন উপহারও দেন নি|” 43 ইস্রায়েলীয়রা উত্তর দিলো, “রাজার ওপর আমাদের এক দশমাংশের অধিকার আছে| তাই রাজার প্রতি তোমাদের থেকে আমাদের দাবী বেশী| কিন্তু তোমরা আমাদের দাবী উপেক্ষা করছ| কেন? আমরাই তারা যারা প্রথম আমাদের রাজাকে ফিরিযে আনবার কথা জিজ্ঞাসা করেছিলাম|”কিন্তু যিহূদার লোকরা ইস্রায়েলীয়দের খুব কর্কশভাবে উত্তর দিল| তারা, ইস্রায়েলীয়রা যা বলেছিল তার চেয়েও বেশী কর্কশ ছিল.
1 সেই খানে বিখ্রিযের পুত্র শেবঃ নামে এক লোক ছিল| শেবঃ বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর এক অকাল কুষ্মাণ্ড| শুধু অন্যদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করত| শেবঃ সকলকে একসঙ্গে জড়ো করার জন্য শিঙা বাজাল এবং বলল, “দায়ূদের ওপর আমাদের কোন অধিকার নেই| য়িশযের পুত্রের ওপরেও আমাদের কোন অধিকার নেই| হে ইস্রাযেলবাসী, চল আমরা নিজেদের তাঁবুতে ফিরে যাই|” 2 তখন ইস্রায়েলীয়রাদায়ূদকে ছেড়ে শেবঃকে অনুসরণ করল| কিন্তু যিহূদার লোকরা সকলেই যর্দন নদী থেকে জেরুশালেমের সারাা পথ দায়ূদের সঙ্গে ছিল| দায়ূদ তার জেরুশালেমের বাড়ীতে ফিরে গেলেন| দায়ূদ তাঁর বাড়ী দেখাশোনা করার জন্য দশজন উপপত্নী রেখেছিলেন| দায়ূদ সেই মহিলাদের এক বিশেষ বাড়ীতে রেখে এসেছিলেন| সেই বাড়ীর চারদিকে তিনি প্রহরী মোতাযেন করেছিলেন| মৃত্যুর আগে পর্য়ন্ত সেই মহিলারা সেই বাড়ীতেই ছিল| দায়ূদ সেই মহিলাদের প্রতি খেযাল রাখতেন| তিনি তাদের খাবার পাঠাতেন, কিন্তু তাদের সঙ্গে কোন য়ৌন সম্পর্ক করেন নি| মৃত্যুর আগে পর্য়ন্ত তারা সেখানে বিধবার মতই থাকত| 3 4 রাজা অমাসাকে বললেন, “যিহূদার লোকদের বল তারা যেন তিন দিনের মধ্যে আমার সঙ্গে দেখা করে এবং তুমিও তাদের সঙ্গে থাকবে|” 5 তখন অমাসা যিহূদার লোকদের একসঙ্গে জমায়েত করতে চলে গেল| কিন্তু রাজা যে সময় তাকে দিয়েছিলেন সে তার থেকেও বেশী সময় নিল| 6 দায়ূদ অবীশযকে বললেন, “বিখ্রিযের পুত্র শেবঃ আমাদের পক্ষে অবশালোমের চেয়েও ভয়ঙ্কর| তাই আমার আধিকারিকদের সঙ্গে নাও এবং শেবঃকে তাড়া কর| কোন প্রাচীর ঘেরা শহরে সে প্রবেশ করার আগেই এই কাজ কর| যদি সে কোন সুরক্ষিত শহরে ঢুকে পড়ে আমরা তাকে আর ধরতে পারব না|” 7 সুতরাং বিখ্রিযের পুত্র শেবঃকে তাড়া করার জন্য য়োয়াব জেরুশালেম ত্যাগ করল| য়োয়াব তার নিজের লোক ছাড়াও করেথীয, পলেথীয ও অন্যান্য সৈন্যদের তার সঙ্গে নিল| 8 য়োয়াব এবং তার সৈন্যরা যখন গিবিয়োন মহাপ্রান্তরের কাছে পৌঁছল, অমাসা তাদের সঙ্গে দেখা করতে এল| য়োয়াব তখন সৈনিকের পোশাক পরেছিল| য়োয়াব একটা কটিবন্ধ পরল এবং একটা খাপে তার তরবারি কটিবন্ধে আটকানো ছিলো| য়োয়াব যখন অমাসার সঙ্গে দেখা করার জন্য যাচ্ছিল, তখন য়োয়াবের তরবারি খাপ থেকে পড়ে গেল| য়োয়াব তরবারিটি তুলে নিয়ে তার হাতে ধরে রইলো| 9 য়োয়াব অমাসাকে জিজ্ঞাসা করল, “কেমন আছো ভাই?”তারপর য়োয়াব ডান হাত দিয়ে চুম্বন করার ভঙ্গীতে অমাসার গলা জড়িয়ে ধরল| 10 য়োয়াবের বাঁ হাতে যে তরবারি রযেছে সে দিকে অমাসা কোন নজরই দেয নি| কিন্তু য়োয়াব অমাসার পেটে তরবারি বসিযে দিল| অমাসার নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে মাটিতে পড়ে গেল| য়োয়াবকে দ্বিতীয়বার আর তরবারি চালাতে হল না - ইতিমধ্যেই সে মারা গেছে|তারপর য়োয়াব এবং তার ভাই অবীশয আবার বিখ্রিযের পুত্র শেবঃকে তাড়া করতে থাকল| 11 য়োয়াবের এক তরুণ সৈন্য অমাসার দেহের পাশে দাঁড়িয়েছিল| সে বলল, “তোমরা সকলে যারা দায়ূদ এবং য়োয়াবকে সমর্থন কর তারা সবাই এস, আমরা য়োয়াবকে অনুসরণ করি|” 12 অমাসা রক্তাক্ত হয়ে রাস্তার মাঝখানে পড়েছিল| তরুণ সৈন্যটি লক্ষ্য করছিল যে সমস্ত লোকই দেখার জন্য থেমে যাচ্ছে| তখন সে দেহটিকে রাস্তার ধারে মাঠের দিকে গড়িযে দিল এবং একটা কাপড় দিয়ে দেহটি ঢেকে দিল| 13 অমাসার দেহ রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর, লোকরা য়োয়াবকে অনুসরণ করে, বিখ্রিযের পুত্র শেবেঃর পিছনে তাড়া করতে চলে গেল| 14 বিখ্রিযের পুত্র শেবঃ আবেল ও বৈত্মাখায় যাবার সময় ইস্রায়েলের সব পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে দিয়েই গেল| সব বেরীয এক সঙ্গে জড় হয়ে শেবঃকে অনুসরণ করল| 15 য়োয়াব এবং তার লোকরা আবেল বৈত্মাখায় উপস্থিত হল| য়োয়াবের সৈন্য শহরকে ঘিরে ফেলল| শহরের প্রাচীরের পাশে তারা উঁচু করে মযলা জড়ো করল যাতে তারা শহরের প্রাচীরে উঠতে পারে| য়োয়াবের লোকরা প্রাচীরটাকে ফেলে দেবার জন্য প্রাচীরের ইঁট পাথর ভাঙ্গা শুরু করল| 16 কিন্তু সেই শহরে একজন প্রচণ্ড বুদ্ধিমতী স্ত্রীলোক ছিল| সে শহর থেকে চিত্কার করে বলল, “আমার কথা শোন! য়োয়াবকে এখানে আসতে বল| আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই|” 17 য়োয়াব সেই স্ত্রীলোকটির সঙ্গে কথা বলতে গেল| স্ত্রীলোকটি তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমিই কি য়োয়াব?” য়োয়াব বলল, “হ্যাঁ, আমিই য়োয়াব|”স্ত্রীলোকটি বলল, “আমার কথা শোন|”য়োয়াব বলল, “আমি শুনছি|” 18 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বলল, “অতীতে লোকরা বলত ‘সাহায্যের জন্য আবেল যাও, তোমার যা দরকার তা পাবে|’ 19 আমি এই শহরের বহু শান্তিপ্রিয ও নিষ্ঠাবান লোকদের একজন| তুমি ইস্রায়েলের এক গুরুত্বপূর্ণ শহর ধ্বংস করতে চেষ্টা করছ| কেন তুমি প্রভুর সম্পত্তি নষ্ট করতে চাইছ?” 20 য়োয়াব উত্তর দিল, “না, আমি কোন কিছু ধ্বংস করতে চাই নি| 21 কিন্তু ইফ্রয়িমের একজন লোক এই শহরে আছে, সে বিখ্রিযের পুত্র, নাম শেবঃ| সে রাজা দায়ূদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে| তাকে আমার কাছে এনে দাও| আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাব|”সেই স্ত্রীলোকটি য়োয়াবকে বলল, “ঠিক আছে| তার মাথা দেওয়ালের ওপারে তোমাদের ছুঁড়ে দেওয়া হবে|” 22 তখন সেই স্ত্রীলোকটি খুব বিচক্ষণতা সহকারে শহরের সব লোকর সঙ্গে কথা বলল| লোকরা বিখ্রিযের পুত্র শেবঃর মাথা কেটে ফেলল| তারপর লোকজন সেই কাটা মাথা শহরের দেওয়ালের ওপাশে য়োয়াবের দিকে ছুঁড়ে দিল|তখন য়োয়াব শিঙা বাজালো এবং সৈন্যরা শহর ছেড়ে চলে গেল| সৈন্যরা বাড়ী ফিরে গেল এবং য়োয়াব জেরুশালেমে রাজার কাছে ফিরে এল| 23 য়োয়াব ইস্রায়েলের সৈন্যবাহিনীর প্রধান ছিল| যিহোয়াদার পুত্র বনায করেথীয ও পলেথীযদের নেতৃত্ব দিয়েছিল| 24 যাদের কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করা হয়েছিল, অদোরাম তাদের নেতৃত্বে ছিল| অহীলূদের পুত্র যিহোশাফট ছিল ঐতিহাসিক| 25 শবা ছিল সচিব| সাদোক এবং অবিয়াথর ছিল যাজক| 26 যাযীরীয ঈরা দায়ূদের প্রধান ভৃত্যছিল|
1 দায়ূদ যখন রাজা ছিলেন তখন একটা দুর্ভিক্ষ হয়েছিল| সেই দুর্ভিক্ষ কবলিত অনাহারের দিন টানা তিন বছর চলেছিল| দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন এবং প্রভু তার উত্তর দিলেন| প্রভু বললেন, “শৌল এবং তার খুনী পরিবারই এই দুর্ভিক্ষের কারণ| শৌল গিবিয়োনীযদের মেরে ফেলেছে বলে এই দুর্ভিক্ষ এসেছে|” 2 গিবিয়োনীয়রা ইস্রাযেলী ছিল না| তারা ইমোরীয়দের একটি গোষ্ঠী| ইস্রায়েলীয়রা শপথ করেছিল যে তারা গিবিয়োনীয়দের আঘাত করবে না| কিন্তু শৌল গিবিযোনীযদের হত্যা করার চেষ্টা করেছিল| শৌল এ কাজ করেছিল কারণ ইস্রাযেল এবং যিহূদার লোকদের সম্পর্কে তার ভাবানুভূতি অত্যন্ত তীব্র ছিল|রাজা দায়ূদ গিবিয়োনীযদের একসঙ্গে ডেকে তাদের সঙ্গে কথা বললেন| 3 দায়ূদ গিবিয়োনীয়দের বললেন, “তোমাদের জন্য আমি কি করতে পারি? ইস্রায়েলের পাপ খণ্ডনের জন্য আমি কি করলে তোমরা প্রভুর সন্তানদের আশীর্বাদ করবে?” 4 গিবিয়োনীয়রা দায়ূদকে বলল, “শৌলের পরিবারের লোকরা যা করেছে তার মূল্য দেওয়ার জন্য তাদের পরিবারের য়থেষ্ট সোনা ও রূপো নেই| কিন্তু আমাদের কোন অধিকার নেই যে ইস্রায়েলের কোন লোককে হত্যা করি|”দায়ূদ বলল, “বেশ, তা হলে আমি তোমাদের জন্য কি করব?” 5 গিবিয়োনীয়রা উত্তর দিল, “শৌল আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে| আমাদের যত লোক ইস্রায়েলে বাস করে তাদের সকলকে সে হত্যা করতে চেয়েছিল| 6 শৌলের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে থেকে সাতটি পুত্র আমাদের দাও| শৌল প্রভুর মনোনীত রাজা ছিল| তাই আমরা শৌলের গিবিয়া পর্বতে, প্রভুর সামনে তার ছেলেদের ফাঁসি দেব|”রাজা দায়ূদ বললেন, “উত্তম, তাদের আমি তোমাদের হাতে সঁপে দেব|” 7 কিন্তু য়োনাথনের পুত্র মফীবোশতকে রাজা নিরাপত্তা দিলেন| য়োনাথনও শৌলের পুত্র, কিন্তু রাজা য়োনাথনের কাছে প্রভুর নামে একটি শপথ গ্রহণ করেছিলেন| 8 দায়ূদ অর্মোণি এবং মফীবোশতকেতাদের হাতে তুলে দিলেন| এরা ছিল শৌল এবং তার স্ত্রী রিস্পার পুত্র| মেরাব নামে শৌলের এক কন্যাও ছিল| মহোলাতীয বর্সিল্লযের পুত্র অদ্রীযেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল| দায়ূদ মেরাব এবং অদ্রীযেলের পাঁচ ছেলেকে নিলেন| 9 দায়ূদ এই সাতজন পুরুষকে গিবিয়োনীয়দের দিয়ে দিলেন যারা তাদের গিবিয়া পর্বতে নিয়ে গিয়েছিল এবং প্রভুর সামনে ফাঁসি দিয়েছিল| এই সাতজন পুরুষ একই সঙ্গে মারা গেল| ফসল তোলার প্রথম দিকেই তাদের হত্যা করা হল| সময়টা ছিল বসন্তকাল এবং এটা ছিল য়বের ফসল তোলার গোড়ার দিকে| 10 অযার কন্যা রিস্পা দুঃখের পোশাক গ্রহণ করল এবং শিলার উপরে তা রাখল| চাষবাসের শুরুর সময় থেকে বৃষ্টি আসা পর্য়ন্ত সেই দুঃখের পোশাক সেই পাথরেই পড়ে রইল| রিস্পা দিনরাত সেই দেহগুলি পাহারা দিত| দিনের বেলায কোন হিংস্র পাখী বা রাতের বেলায কোন হিংস্র প্রাণীকে সে দেহগুলির কাছে আসতে দিত না| 11 শৌলের দাসী রিস্পা যা করছে, সে সম্পর্কে লোকরা রাজা দায়ূদকে বলল| 12 তখন রাজা দায়ূদ শৌল ও য়োনাথনের হাড়গুলো যাবেশ গিলিয়দের কাছে থেকে নিয়ে নিলেন| শৌল ও য়োনাথনের গিল্বোযাতে মৃত্যুর পর যাবেশ গিলিয়দরা সেই হাড়গুলি এনেছিল| পলেষ্টীয়রা শৌল ও য়োনাথনের দেহ দুটি বৈত্শানের (নিকটস্থ) দেওয়ালে ঝুলিয়ে রেখেছিল| কিন্তু বৈত্শানের লোকরা সেখানে গিয়ে দেহগুলি চুরি করে আনে| 13 যাবেশ গিলিয়দের কাছ থেকে দায়ূদ শৌল এবং তার পুত্র য়োনাথনের হাড়গুলি নিয়ে আসেন| সেই সাত জন যাদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, তাদের দেহও তারা নিয়ে গিয়েছিল| 14 শৌল এবং য়োনাথনের হাড় তারা বিন্যামীন দেশে কবরস্থ করল| শৌলের পিতা কীশের কবরের মধ্যে তারা তাদের কবর দিল| রাজা যা যা বলেছিলেন, লোকরা ঠিক তাই তাই করল| তাই ঈশ্বর সেই দেশের লোকর প্রার্থনা শুনলেন| 15 পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে আর একটি যুদ্ধে লিপ্ত হল| দায়ূদ এবং তার লোকরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই করতে গেলেন| কিন্তু দায়ূদ প্রচণ্ড ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়লেন| 16 য়িশ্বী-বনোব একজন দৈত্য ছিল| তার বর্শার ওজন ছিল প্রায 7.5 পাউণ্ড পিতল| তার একটা নতুন তরবারি ছিল| সে দায়ূদকে হত্যা করার চেষ্টা করল| 17 কিন্তু সরূযার পুত্র অবীশয সেই পলেষ্টীয়কে হত্যা করে দায়ূদকে বাঁচিয়ে দিল|তখন দায়ূদের লোকরা দায়ূদের কাছে একটা শপথ করল| তারা তাঁকে বলল, “আপনি আর কোনভাবেই আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে পারবেন না| যদি যান তাহলে ইস্রাযেল হয়তো তার মহান নেতাকে হারাবে|” 18 পরে গোব নামক স্থানে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে আর একটি যুদ্ধ হল| হূশাতীয সিব্বখয দৈত্যদের মধ্যে সফ নামে আর একজনকে হত্যা করল| 19 পরে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে গোব নামক স্থানে আর একটা যুদ্ধ হয়| সেই যুদ্ধ বৈত্লেহমবাসী যারেওরগীমের পুত্র ইলহানন, গাতীয গলিযাতকে হত্যা করল| তার বর্শা তাঁতির তাঁতের দণ্ডের মতই বড় ছিল| 20 গাতে আরও একটা যুদ্ধ হয়| একজন খুব লম্বা চেহারার লোক ছিল যার প্রত্যেকটি হাতে এবং পাযের পাতায ছটা করে, মোট 24টা আঙ্গুল ছিল| এই লোকটাও একজন রাফার সন্তান| 21 ঐ লোকটা ইস্রাযেলকে বিদ্রূপ করল কিন্তু য়োনাথন, শিমিযির পুত্র যে ছিল দায়ূদের ভাই, তাকে হত্যা করল| 22 এই চারজন প্রত্যেকেই দৈত্যদের সন্তান এবং এরা গাত থেকে এসেছিল| তারা দায়ূদ এবং তার লোকদের দ্বারা নিহত হয়েছিল|
1 প্রভু যখন দায়ূদকে শৌল এবং অন্যান্য শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করলেন তখন দায়ূদ এই গীত গাইলেন: 2 প্রভু আমার শিলা, আমার দুর্গ, আমার নিরাপদ আশ্রয়| 3 আমার ঈশ্বর হচ্ছেন আমার শিলা যার কাছে আমি নিরাপত্তার জন্য ছুটে যাই| ঈশ্বর আমার ঢাল, তাঁর ক্ষমতা আমায় রক্ষা করে| প্রভু আমার লুকিয়ে থাকার জায়গা| উঁচু পাহাড়ে, তিনি আমার নিরাপদ স্থান| নৃশংস শত্রুর থেকে তিনি আমায় রক্ষা করেন| 4 প্রভু প্রশংসার য়োগ্য| আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছি এবং তিনি আমাকে আমার শত্রুর কাছ থেকে রক্ষা করেছেন| 5 আমার শত্রুরা আমায় হত্যা করতে চাইছিল| আমার চারপাশে মৃত্যুর তরঙ্গ মালার উচ্ছসিত কোলাহল অদম্য় স্রোতে আমি মৃত্যুর দিকে ভেসে যাচ্ছিলাম| 6 আমার সামনে মৃত্যুর ফাঁদ, আমার চারপাশে কবরের দড়ি| 7 বদ্ধ আমি, আমার প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করলাম, হ্যাঁ, আমার ঈশ্বরকে ডাকলাম| ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে ছিলেন| তিনি আমার ডাক শুনলেন| আমার সাহায্যের জন্য প্রার্থনা তাঁর কানে গেল| 8 তখন মাটি কেঁপে উঠল| অন্তরীক্ষের ভিত নড়ে উঠল| কেন? কারণ, প্রভু ক্রোধান্বিত হলেন| 9 ঈশ্বরের নাক থেকে ধোঁযা বেরিয়ে এল| তাঁর মুখ থেকে অগ্নিশিখা এবং স্ফুলিঙ্গ বিচ্ছুরিত হতে লাগল| 10 প্রভু গগনমণ্ডল বিদীর্ণ করে নীচে নেমে এলেন| একটি গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ মেঘের ওপর তিনি দাঁড়ালেন| 11 তিনি করূব দূতগণের পিঠে চড়ে এবং বাতাসে ভর দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছিলেন| 12 তাঁর চারপাশে, একটা তাঁবুর মত গাঢ় কাল মেঘ দিয়ে প্রভু নিজেকে ঘিরে রেখেছিলেন| সেই বজ্র বিদ্য়ুত্ময মেঘে, তিনি জলরাশি জমা করেছিলেন| 13 তাঁর চারপাশ থেকে জ্বলন্ত কযলার মত আলোকমালা বিকীর্ণ হতে লাগল| 14 প্রভু আকাশ থেকে বজ্রপাত করলেন| পরাত্পর তাঁর কন্ঠস্বর শ্রুতিগোচর করলেন| 15 প্রভু শত্রুদের ছিন্ন ভিন্ন করবার জন্য তাঁর শর নিক্ষেপ করলেন| প্রভু বিদ্য়ুত্ প্রেরণ করলেন এবং লোকরা বিভ্রান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়লো| 16 হে প্রভু, আপনি দৃঢ়কণ্ঠে কথা বলেছিলেন| তাঁর মুখ থেকে তীব্রগতি বাতাস বয়ে গিয়েছিল এবং জলকে পিছনে ঠেলে দিয়েছিলেন| সেদিন আমরা সমুদ্রের তলদেশ দেখেছিলাম| আমরা সেদিন পৃথিবীর ভিত্তিভূমিও দেখেছিলাম| 17 সেইভাবে প্রভু আমাকেও সাহায্য করেছিলেন| প্রভু ওপর থেকে আমার কাছে নেমে এসেছিলেন| প্রভু তাঁর দুটি হাত দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরে বিপদ থেকে টেনে উদ্ধার করেছিলেন| 18 আমার শত্রুরা আমার চেয়ে শক্তিশালী ছিল| সেই লোকরা আমায় ঘৃণা করত| আমার শত্রুরা আমার পক্ষে একটু বেশী শক্তিশালীই ছিল, তাই ঈশ্বর আমায় রক্ষা করলেন| 19 যখন আমি সমস্যায় জর্জরিত তখন শত্রুরা আমায় আক্রমণ করে| কিন্তু, একমাত্র প্রভুই আমার পাশে ছিলেন| 20 প্রভু আমায় ভালোবাসেন, তিনি আমায় উদ্ধার করেছেন| তিনি আমায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেছেন| 21 প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন| কারণ যা সত্য আমি তাই করেছি| তাই তিনি আমার ভাল করবেন| 22 কেন? কারণ আমি প্রভুকে মান্য করে চলেছি| আমার প্রভুর বিরুদ্ধে আমি কোন পাপ করি নি| 23 আমি সর্বদাই প্রভুর সিদ্ধান্তসকল স্মরণে রাখি ও তাঁর বিধিগুলি অনুসরণ করি| 24 তাঁর সামনে আমি নিজেকে সর্বদাই শুচি এবং নির্দোষ রাখি| 25 এই জন্য প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন| কেন? কারণ যা সত্য আমি তাই করেছি| আমি কোন অন্যায করি নি, তাই তিনি আমার মঙ্গল করবেন| 26 যদি কোন ব্যক্তি আপনাকে প্রকৃতই ভালবাসে, তাহলে তার প্রতি আপনি প্রকৃত ভালোবাসা দেখাবেন| যদি কোন ব্যক্তি আপনার প্রতি নিষ্ঠাবান হন তাহলে তার প্রতি আপনিও নিষ্ঠাবান হন| 27 হে প্রভু, যারা শুচি এবং ভাল আপনিও তাদের প্রতি শুচি ও ভাল| কিন্তু আপনি চতুর ও কুচক্রী ব্যক্তিকে পরাস্ত করতে সক্ষম| 28 হে প্রভু, সরল সত্ লোকদের আপনি সাহায্য করেন| কিন্তু অহঙ্কারীদের আপনি লজ্জিত করেন| 29 হে প্রভু, আপনি আমার জ্বলন্ত দ্বীপ, প্রভু আমার চারপাশের অন্ধকারকে আলোকিত করেন| 30 হে প্রভু, আপনার সহায়তায আমি সৈন্যদের সঙ্গে দৌড়তে পারি| ঈশ্বরের সহায়তায আমি শত্রু পক্ষের দেওয়াল অতিক্রম করতে পারি| 31 ঈশ্বরের পথই পরিপূর্ণ| প্রভুর বাক্য় পরীক্ষিত সত্য| যারা তাঁকে বিশ্বাস করে, তিনি তাদের রক্ষা করেন| 32 প্রভু ছাড়া দ্বিতীয় কোন ঈশ্বর নেই| আমাদের ঈশ্বর ব্যতীত অন্য কোন শিলা নেই| 33 ঈশ্বরই আমার দূর্গ| তিনি সত্ মানুষকে জীবনের সঠিক পথ দেখান| 34 প্রভু আমাকে হরিণের মত দ্রুত দৌড়াতে সাহায্য করেন| উচ্চস্থানে তিনি আমায় অবিচল রাখেন| 35 প্রভু আমাকে যুদ্ধ বিদ্য়া শিখিযেছিলেন| সেই কারণে আমার বাহু একটি শক্তিশালী শর নিক্ষেপ করতে পারে| 36 হে প্রভু! আপনি আমায় রক্ষা করেছেন| আপনি আমাকে জয়ী হতে সাহায্য করেছেন| আপনি আমার শত্রুকে পরাজিত করতে সাহায্য করেছেন| 37 আমার হাঁটু এবং পা দুটিকে সবল করে দিন যেন না খুঁড়িযে দ্রুত দৌড়াতে পারি| 38 আমার শত্রুদের নিধন না করা পর্য়ন্ত আমি তাদের তাড়া করতে চাই| তারা ধ্বংস প্রাপ্ত না হওয়া পর্য়ন্ত আমি ফিরে আসতে চাই না| 39 আমি আমার শত্রুদের ধ্বংস করেছি আমি তাদের পরাজিত করেছি| তারা আর উঠে দাঁড়াবে না| হ্যাঁ, আমার শত্রুরা আমার পাযের কাছে লুটিযে পড়েছে| 40 হে ঈশ্বর, আপনিই আমায় যুদ্ধে শক্তিশালী করেছেন, আপনিই আমার শত্রুদের আমার পাযের কাছে লুটিযে দিয়েছেন| 41 আমার শত্রুর গলা কেটে তাদের লুটিযে ফেলার সুয়োগ আপনিই আমাকে দিয়েছেন| 42 আমার শত্রুরা সাহায্য চেয়েছিল কিন্তু তাদের সাহায্য করার কেউ ছিল না| এমনকি তারা প্রভুর কাছেও সাহায্য চেয়েছিল কিন্তু প্রভু তার কোন উত্তর দেন নি| 43 আমি শত্রুদের ছিন্ন ভিন্ন করে তাদের ধূলোয় পরিণত করেছি| তাদের আমি চূর্ণবিচূর্ণ করেছি| রাস্তার কাদার মত আমি তাদের মাড়িয়ে গিয়েছি| 44 আমার বিরুদ্ধে আমার নিজের লোক যারা লড়াই করেছে, হে প্রভু, আপনি তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করেছেন| আপনি আমাকে জাতির শাসক করেছেন| যে লোকদের আমি জানতাম না, তারা এখন আমার সেবা করে| 45 অন্য দেশের লোকরাও আমায় মান্য করেছে| যখন তারা আমার নির্দেশ শুনেছে, তত্ক্ষনাত্ তারা তা পালন করেছে| সেই সব বিদেশীরা আমাকে ভয় করেছে| 46 সেই সব বিদেশীরা ভয়ে শুকিয়ে গেছে| ভয়ে ভীত হয়ে তারা গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে এসেছে| 47 প্রভু জীবিত| আমি আমার শিলাকে প্রশংসা করি! ঈশ্বর মহান! তিনিই সেই শিলা যিনি আমাকে রক্ষা করেন| 48 তিনি সেই ঈশ্বর যিনি আমার জন্য আমার শত্রুদের শাস্তি দিয়েছেন| লোকদের তিনি আমার শাসনের অন্তর্ভুক্ত করেছেন| 49 হে ঈশ্বর, আপনি আমায় শত্রুদের থেকে রক্ষা করেছেন| যারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল তাদের পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন| শত্রুদের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন| 50 তাই হে প্রভু, আমি জাতিগুলির মধ্যে আপনার প্রশংসা করি! এই কারণে আমি আপনার নামে গান গাই| 51 প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে যে কোন যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করেন| তাঁর মনোনীত রাজার জন্য প্রভু তাঁর করুণা বর্ষণ করেন| তিনি দায়ূদের প্রতি এবং তাঁর উত্তরসূরীদের প্রতি সর্বদা বিশ্বস্ত থাকবেন|
1 এইগুলি হল য়িশযের পুত্র দায়ূদের শেষ বাক্য়| এই বার্তা এসেছে সেই লোকরি কাছ থেকে যাকে ঈশ্বর মহান করেছেন, যিনি যাকোবের ঈশ্বরের মনোনীত রাজা, ইস্রায়েলের সুমধুর গায়ক| এইগুলি তাঁর বাণী| 2 প্রভুর আত্মা আমার মধ্য দিয়ে কথা বলেছেন| আমার মুখ দিয়ে তাঁর বাক্য় উচ্চারিত হয়েছে| 3 ইস্রায়েলের ঈশ্বর কথা বলেছেন| ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমায় বলেছেন, “সেই ব্যক্তি যিনি সত্ভাবে শাসন করেন| 4 সেই ব্যক্তি যে ঈশ্বরে শ্রদ্ধা রেখে শাসন করে| সেই ব্যক্তি ঊষাকালের প্রভাত কিরণের মত, পরিষ্কার আকাশের মত, বৃষ্টির পর সূর্য় কিরণের মত, সেই বৃষ্টির মত যার ছোঁযায় মাটির ওপর নতুন ঘাস জন্ম নেয|” 5 ঈশ্বর আমার পরিবারকে শক্তিশালী এবং সুরক্ষিত করেছেন| আমার সঙ্গে তিনি চিরদিনের জন্য একটি চুক্তি করেছেন| এই চুক্তিকে ঈশ্বর সবদিক থেকে সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত করেছেন| তাই, নিশ্চিতভাবে তিনি আমায় সকল জয় ও সাফল্য দেবেন| আমি যা চাই তার সবই তিনি আমায় দেবেন| 6 কিন্তু মন্দ লোকরা কাঁটার মত| লোক কাঁটা রাখে না; তারা কাঁটাগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেয| 7 লোক যখন সেই কাঁটাগুলি স্পর্শ করে, তারা কাঠের বর্শার মত অথবা লোহার ডাণ্ডার মত নিজেদের আহত করে| হ্যাঁ, সেইসব লোক কাঁটার মত| তাদের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে, তারা সম্পূর্ণরূপে ভস্মীভূত হবে| 8 এইগুলি হল দায়ূদের বীর সৈনিকের নাম: তখমোনীয য়োশেব-বশেবত্| য়োশেব-বশেবত্ তিনজন শৌর্য়্য়পূর্ণ সেনার অধিনাযক ছিল| তাকে ইস্নীয আদীনো বলে ডাকা হত| য়োশেব-বশেবত্ একসঙ্গে 800 লোককে হত্যা করেছিল| 9 পরবর্ত্তী বীর হল, অহোহীযের অধিবাসী, দোদযের পুত্র ইলিয়াসর| ইলিয়াসর সেই তিনজন য়োদ্ধাদের একজন যারা পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় দায়ূদের সঙ্গে ছিল| তারা যুদ্ধের জন্য জমায়েত হয়েছিল কিন্তু ইস্রায়েলীয় সেনারা দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছিল| 10 ইলিয়াসর প্রচণ্ড অবসন্ন হওয়ার আগে পর্য়ন্ত পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল| সে দৃঢ়ভাবে তরবারি ধরে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিল| সেই দিন প্রভু ইস্রাযেলকে একটা বড় জয় এনে দিলেন| ইলিয়াসর যুদ্ধে জয়ী হলে লোকরা সকলে ফিরে এল| কিন্তু তারা শুধুমাত্র মৃত শত্রুদের থেকে জিনিসপত্র নিতে এসেছিল| 11 পরবর্তী বীর শম্ম| সে হরারীয আগির সন্তান| পলেষ্টীয়রা একসঙ্গে যুদ্ধ করতে এল| একটি মুসুর ক্ষেতে তাদের লড়াই হল| পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে লোকরা ছুটে পালিয়ে গেল| 12 কিন্তু শম্ম যুদ্ধক্ষেত্রের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করল| সে পলেষ্টীয়দের পরাজিত করল| সেই দিন, প্রভু ইস্রাযেলকে এক মহান বিজয় এনে দিলেন| 13 একদিন, দায়ূদ অদুল্লম গুহাতে অবস্থান করছিলেন এবং পলেষ্টীয়রা রফাযীম উপত্যকায ছিল| দায়ূদের খুব ঘনিষ্ঠ ত্রিশ জন বীর য়োদ্ধারমধ্য থেকে এই তিন জন মাটিতে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ে সরীসৃপের মত বুকে ভর দিয়ে দায়ূদের গুহায় পৌঁছে গিয়েছিল এবং দায়ূদের সঙ্গে য়োগ দিয়েছিল| 14 অন্য আর এক সময়, দায়ূদ এক দুর্গের মধ্যে ছিলেন এবং সেই সময় একদল পলেষ্টীয় সেনা বৈত্লেহমে ছিল| 15 একটু জলের জন্য দায়ূদ তৃষ্ণার্ত ছিলেন| তিনি বললেন, “আমার ইচ্ছা, বৈত্লেহমের নগরদ্বারের কুযো থেকে কেউ আমায় খানিকটা জল এনে দিক!” আসলে দায়ূদ প্রকৃতই জল চান নি, তিনি এমনি সে কথা বলেছিলেন| 16 কিন্তু সেই তিনজন শৌর্য়্য়পূর্ণ য়োদ্ধা পলেষ্টীয় সেনাদের মধ্যে দিয়ে যুদ্ধ করল এবং গিয়ে বৈত্লেহম শহরের ফটকের কাছে কুযো থেকে জল এনেছিল| তারা সেই জল দায়ূদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল| কিন্তু দায়ূদ সেই জল পান করতে অস্বীকার করলেন| তিনি সেই জল মাটিতে ঢেলে দিয়ে তা প্রভুর কাছে উত্সর্গ করলেন| 17 দায়ূদ বললেন, “হে প্রভু, এই জল আমি পান করতে পারি না| যদি আমি এই জল পান করি, তাহলে তা তাদের রক্ত পান করার মতই অন্যায কাজ হবে, যারা আমার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই জল এনেছে|” এই কারণে দায়ূদ সেই জল পান করতে অস্বীকার করেন| এই তিন জন বীর এই রকম আরও অনেক সাহসিকতার পরিচয দিয়েছে| 18 য়োয়াবের ভাই এবং সরূযার পুত্রের নাম অবীশয| অবীশয এই তিনজন য়োদ্ধার নেতা ছিল| অবীশয 300 শত্রুর বিরুদ্ধে তার বর্শাকে ব্যবহার করেছে এবং তাদের হত্যা করেছে| সেও এই তিন জন বীর য়োদ্ধার মতই বিখ্যাত হয়েছিল| 19 অবীশয ঐ তিন জন বীরের মতই বিখ্যাত হয়েছিল| যদিও সে ঐ তিন জন বীরের একজনও নয় তবু সে ঐ তিন বীরের নেতা হয়ে গিয়েছিল| 20 এছাড়া যিহোয়াদার পুত্র বনায ছিল আর এক বীর| সে এক পরাক্রমশালী পিতার সন্তান| সে কব্সেল থেকে এসেছিল| বনায অনেকগুলি দুঃসাহসের কাজ করেছিল| মোয়াবীয় অরীযেলের দুই পুত্রকে সে হত্যা করেছিল| একদিন যখন তুষারপাত হচ্ছে, বনায মাটির একটা গর্তের মধ্যে ঢুকে এক সিংহকে বধ করে| 21 বনায এক মিশরীয় সৈন্যকেও হত্যা করে| মিশরীয় সৈন্যটির হাতে একটা বর্শা ছিল| কিন্তু বনায়ের হাতে একটি মাত্র মুগুর ছিল| বনায মিশরীয় সৈন্যটির বর্শাটা মুঠো করে চেপে ধরে এবং তার কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নেয| তারপর তার নিজের বর্শা দিয়ে সেই মিশরীয় সৈন্যকে হত্যা করে| 22 যিহোয়াদার পুত্র বনায এই রকম নানা দুঃসাহসিক কাজ করেছিল| সে সেই তিন বীরপুরুষের মতই বিখ্যাত ছিল| 23 বনায সেই ত্রিশ জন বীরের থেকেও বিখ্যাত ছিল, কিন্তু সে সেই তিন জন বীরপুরুষের একজন ছিল না| দায়ূদ বনাযকে তার দেহরক্ষীদের নেতা রূপে মনোনীত করেন| 24 য়োয়াবের ভাই অসাহেল ত্রিশ জন বীরের একজন, ঐ ত্রিশ জন য়োদ্ধার অন্যান্য বীররা হল: বৈত্লেহমের দোদযের পুত্র ইল্হানন| 25 হরোদীয শম্ম; সহরোদীয ইলীকা; 26 পল্টীয হেলস্; তকোযীয ইক্কেশের পুত্র ঈরা; 27 অনাথোতীয অবীযেষর; হূশাতীয মবুন্নয; 28 অহোহীয সল্মোন; নটোফাতীয মহরয; 29 নটোফত্ থেকে বানা এর পুত্র হেলব, গিবিয়ার বিন্যামীনের রীবয়ের পুত্র ইত্তয; 30 পিরিযাথোনীয বনায; গাশ উপত্যকা নিবাসী হিদ্দয, 31 অর্বতীয অবি-যলবোন; বরহূমীয অস্মাবত্; 32 শাল্বোনীয ইলিযহবা; যাশেনের পুত্ররা; 33 হরার থেকে শম্মের পুত্র য়োনাথন, হরার থেকে সাররের পুত্র অহীযাম; 34 মাখাথীয অহবয়ংের পুত্র ইলীফেলট; গীলোনীয অহীথোফলের পুত্র ইলীয়াম; 35 কর্মিলীয হিষ্রয; অব্বীয পারয, 36 সোবা নিবাসী নাথনের পুত্র য়িগাল, গাদীয বানী, 37 অম্মোনীয সেলক, বেরোতীয নহরয যে সরূযার পুত্র য়োয়াবের বর্ম বহন করেছিল| 38 য়িত্রীয ঈরা, য়িত্রীয গারেব; 39 এবং হিত্তীয় ঊরিয| সেই দলে মোট 37জন ছিল|
1 প্রভু ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে আবার ক্রুদ্ধ হলেন| প্রভু দায়ূদকে ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করলেন| দায়ূদ বললেন, “যাও, গিয়ে ইস্রাযেল এবং যিহূদার লোকসংখ্যা গণনা কর|” 2 রাজা দায়ূদ তাঁর সেনাপতি য়োয়াবকে বললেন, “যাও, দান থেকে বের-শেবা পর্য়ন্ত লোকসংখ্যা গণনা করে এসো| তাহলে আমি জানতে পারব সেখানে কত লোকজন আছে|” 3 য়োয়াব রাজাকে বললেন, “ঠিক কত সংখ্য়ক লোক আছে তাতে কিছু এসে যায় না| প্রভু, আপনার ঈশ্বর যেন তার 100 গুণ বেশী লোকজন আপনাকে দেন| এই ঘটনাগুলি যেন আপনি নিজের চোখে ঘটতে দেখেন| কিন্তু কেন আপনি এই গণনার কাজ করতে চাইছেন?” 4 রাজা দায়ূদ বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে তাঁর সেনাপতিদের এবং য়োয়াবকে লোকগণনার হুকুম দিলেন| তখন য়োয়াব এবং সেনাপতি রাজার কাছ থেকে চলে গেল এবং লোকগণনার কাজ করতে লাগল| 5 তারা যর্দন নদী পার হয়ে গেল| অরোযের নামক স্থানে তারা ঘাঁটি গাড়লো| তাদের ঘাঁটি শহরের ডানদিকে অবস্থিত ছিল| (এই শহরটি যাসেরের পথে যেতে গাদ উপত্যকার মধ্যে অবস্থিত ছিল|) 6 তারপর তারা পূর্বদিকে গিয়ে তহতীম-হদ্শি দেশের দিকে গিলিয়দে এল| তারপর তারা উত্তরদিকে দান-যান হয়ে সীদোন পর্য়ন্ত গেল| 7 তারা সোর দূর্গেও গিয়েছিল| তারা হিব্বীয় ও কনানীযদের প্রত্যেকটি শহরে গিয়েছিল| দক্ষিণ দিকে তারা যিহূদার দক্ষিণস্থ বের্-শেবা পর্য়ন্ত গিয়েছিল| 8 গোটা দেশে যেতে তাদের 9 মাস 20 দিন সময় লেগেছিল| তারা 9 মাস 20 দিন পরে জেরুশালেমে ফিরে এসেছিল| 9 য়োয়াব রাজার হাতে লোকসংখ্যার তালিকা তুলে দিল| তরবারি ব্যবহার করতে পারে এমন লোকর সংখ্যা ইস্রায়েলে ছিল 8,00,000 এবং যিহূদার লোকসংখ্যা ছিল 5,00,000 জন| 10 লোকসংখ্যা গণনার পর দায়ূদ লজ্জিত হলেন| দায়ূদ প্রভুকে বললেন, “আমি যা করেছি তাতে আমার মস্ত বড় পাপ হয়েছে| হে প্রভু, মিনতি করি, আপনি আমার পাপ ক্ষমা করে দিন| আমি সত্যি বোকার মত কাজ করেছি| 11 দায়ূদ যখন সকালে ঘুম থেকে উঠলেন, তখন দায়ূদের ভাববাদী গাদের কাছে প্রভুর বাক্য় নেমে এল| 12 প্রভু গাদকে বললেন, “যাও গিয়ে দায়ূদকে বল, ‘প্রভু এই কথাই বললেন: আমি তোমাকে তিনটি বিষয দিচ্ছি| তুমি পছন্দ কর কোন্টা আমি তোমার প্রতি বরাদ্দ করব|” 13 গাদ দায়ূদের কাছে এসে বলল, “তিনটি বিষযের মধ্যে থেকে একটা বেছে নাও:1. তোমার রাজ্যে সাত বছরের দুর্ভিক্ষ|2. তোমার শত্রুরা তিন মাস ধরে তোমায় তাড়া করবে|3. তোমার দেশে তিন দিনের মহামারী আসবে|এ বিষযে চিন্তা করে, তিনটের মধ্যে একটা বিষয বেছে নাও| তোমার কোনটা পছন্দ হল সে সম্পর্কে আমি প্রভুকে বলব| প্রভু আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছেন|” 14 দায়ূদ গাদকে বলল, “আমি সত্যিই খুব সমস্যায় পড়েছি| কিন্তু প্রভু সত্যি বড় ক্ষমাশীল| সুতরাং প্রভুই আমাদের শাস্তি দিন| আমার শাস্তি যেন লোকদের কাছ থেকে না আসে|” 15 অতএব প্রভু ইস্রায়েলে একটি মহামারী পাঠালেন| এই মহামারী সকালে শুরু হল এবং মনোনীত সময় পর্য়ন্ত চলল| দান থেকে বের্-শেবা পর্য়ন্ত সারা ইস্রায়েলের 70,000 লোক মারা গেল| 16 দেবদূত জেরুশালেমকে ধ্বংস করার জন্য তাঁর বাহু ওপরে ওঠালেন| ঈশ্বর শাস্তির ব্যাপারে তাঁর মন পরিবর্তন করলেন| যে দূত ধ্বংস করছিলেন, প্রভু তাঁকে বললেন, “অনেক হয়েছে| তোমাদের হাত গুটিযে নাও|” সেই সময় তাঁরা যিবূষীয় অরৌনার খামারের কাছে ছিলেন| 17 যে দূত লোকদের হত্যা করছিল দায়ূদ তাকে দেখলেন| দায়ূদ প্রভুর সঙ্গে কথা বললেন| দায়ূদ বললেন, “আমি পাপ করেছি| আমি গর্হিত কাজ করেছি| আমি ওদের যা করতে বলেছি এই সব লোক তাই করেছে| তারা বাধ্য মেষের মত আমায় অনুসরণ করেছে| তারা কোন ভুল করে নি| দয়া করে আপনার শাস্তি আমাকে এবং আমার পিতার পরিবারকে দিন|” 18 সেই দিন গাদ দায়ূদের কাছে এল| গাদ দায়ূদকে বলল, “যাও, যিবূষীয় অরৌণার শস্য মাড়ানোর জমিতে প্রভুর জন্য একটি বেদী তৈরী কর|” 19 যেমন গাদ তাকে বলল সেইমত দায়ূদ করল| প্রভু যা চান দায়ূদ ঠিক তাই করল| দায়ূদ অরৌণার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| 20 অরৌণা দেখল যে রাজা দায়ূদ এবং তাঁর আধিকারিকরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসছে| অরৌণা বাইরে বেরিয়ে গিয়ে মাথা নত করে প্রণাম করল| 21 অরৌণা বলল, “আমার গুরু এবং রাজা কেন আমার কাছে এসেছেন?”দায়ূদ উত্তর দিলেন, “আমি তোমার কাছ থেকে খামার বাড়ীটি কিনতে এসেছি| তারপর আমি প্রভুর জন্য একটা বেদী বানাব| তাহলে এই মহামারী বন্ধ হয়ে যাবে|” 22 অরৌণা দায়ূদকে বলল, “হে আমার গুরু এবং রাজা, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ হিসেবে আপনি যা খুশী তাই নিতে পারেন| এখানে হোমবলির জন্য কিছু গরু এবং কাঠের জন্য এই ধান ঝাড়াইযের পাটাতন এবং বাঁকগুলোও দিয়ে দিচ্ছি| 23 হে রাজা, এইসব আমি আপনাকে দিয়ে দিচ্ছি!” অরৌণা রাজাকে আরও বলল, “প্রভু, আপনার ঈশ্বর, যেন আপনার প্রতি প্রসন্ন হন|” 24 কিন্তু রাজা অরৌণাকে বললেন, “না! আমি তোমাকে এই জমির দাম দিয়ে দেব| আমি আমার প্রভু ঈশ্বরকে হোমবলি উত্সর্গ করব না যার জন্য আমি কোন অর্থ দিইনি|”তখন দায়ূদ 50শেকল রূপোর বিনিময়ে সেই ঢেঁকি এবং গরুগুলো কিনে নিলেন| 25 তারপর দায়ূদ প্রভুর উদ্দেশ্যে সেখানে এক বেদী নির্মাণ করলেন| তিনি তার ওপরে হোমবলি এবং মঙ্গলার্থক বলি উত্সর্গ করলেন| সারা দেশের জন্য দায়ূদের প্রার্থনায প্রভু সাড়া দিলেন| প্রভু সেই মহামারীকে ইস্রায়েলে থামিয়ে দিলেন|
1 রাজা দায়ূদ বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন| তাঁর এতো বয়স হয়েছিল য়ে কোনো মতেই আর তাঁর শরীর উষ্ণ হয় না| এমন কি ভৃত্যরা তাঁর শরীর কম্বল দিয়ে ঢাকা সত্ত্বেও তাঁর শীত আর কাটে না| 2 তখন ভৃত্যরা রাজাকে বলল, “আমরা তবে আপনার য়ত্ন করার জন্য একটি যুবতী মেয়েকে খুঁজে বের করি| সে আপনার পাশে শয়ন করবে এবং আপনাকে উষ্ণ রাখবে|” 3 তখন রাজকর্মচারীরা রাজাকে উষ্ণ রাখার জন্য ইস্রায়েলের সর্বত্র সুন্দরী যুবতী মেয়ে খুঁজে বেড়াতে লাগল| এমনি করে খুঁজতে খুঁজতে শূনেম শহরে সুন্দরী অবীশগের খোঁজ মিলল| তারা তখন ঐ মেয়েটিকে রাজার কাছে নিয়ে এলো| 4 অবীশগ সত্যি সত্যিই অপরূপ সুন্দরী ছিল| সে রাজার সব রকম য়ত্ন বা পরিচর্য়া করলেও তার সঙ্গে রাজা দায়ূদের কোনো শারীরিক সম্পর্ক ছিল না| 5 রাজা দায়ূদ ও রাণী হগীতের পুত্রের নাম আদোনিয়| এই আদোনীয খুবই সুপুরুষ ছিলেন| রাজা দায়ূদ কখনও তাঁকে শোধরাবার চেষ্টা করেন নি| তিনি তাঁকে কখনও জিজ্ঞেস করেন নি, “কেন তুমি এসব করছ?” যদিও অবশালোম নামে তাঁর এক ভাই ছিলেন, উচ্চাকাঙ্খী ও ক্ষমতাভিলাষী| আদোনিয় মনে মনে ঠিক করলেন য়ে এরপর তিনিই রাজা হবেন; আর একথা স্থির করে তিনি নিজের সুবিধের জন্য তাড়াতাড়ি একটা রথ, কিছু ঘোড়া ও তাঁর রথের সামনে দৌড়োনোর জন্য প্রায় 50 জন লোক জোগাড় করে ফেললেন| 6 7 রাজা হবার বিষযটা নিয়ে তিনি সরূযার পুত্র য়োয়াব ও যাজক অবিয়াথরের সঙ্গে পরামর্শও সেরে ফেললেন| তারা তাঁকে নতুন রাজা হতে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিল| 8 কিন্তু রাজা দায়ূদের প্রতি অনুগত কিছু ব্যক্তির আদোনিয়র এই উচ্চাভিলাষ পছন্দ হয় নি| এরা হল যাজক সাদোক, যিহোয়াদার পুত্র বনায, ভাববাদী নাথন, শিমিযি, রেযি ও রাজা দায়ূদের বিশেষ রক্ষীদল| এরা কেউই আদোনিয়র সঙ্গে য়োগ দেয় নি| 9 এক দিন আদোনিয় ঐন্-রোগেলের কাছে সোহেলত্ পাথরে বেশ কিছু মেষ, ষাঁড় ও বাছুর মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বলি দিয়ে তাঁর ভাইদের (রাজা দায়ূদের অন্যান্য পুত্রদের) ও যিহূদার সমস্ত আধিকারিকদের নিমন্ত্রণ করলেন| 10 কিন্তু আদোনিয় তাঁর পিতার বিশেষ রক্ষীদের, তাঁর ভাই শলোমন, বনায ও যাজক নাথনকে এদিন নিমন্ত্রণ করেন নি|” 11 নাথন একথা জানতে পেরে শলোমনের মা বত্শেবার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, “হগীতের পুত্র আদোনিয় কি করছে আপনি কি কিছু জানেন? তিনি রাজা হবার প্রস্তুতি করছেন| এদিকে রাজা দায়ূদ এসবের বিন্দু বিসর্গ জানেন না| 12 এক্ষেত্রে আপনার ও আপনার পুত্র শলোমনের প্রাণের আশঙ্কা থাকতে পারে বলেই আমরা ধারণা| তবে চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি আপনাকে আত্মরক্ষার একটা উপায় বলে দিচ্ছি| 13 রাজা দায়ূদের কাছে যান এবং তাঁকে বলুন, ‘হে রাজাধিরাজ, আপনি আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে আপনার পরে আমার পুত্র শলোমনই পরবর্তী রাজা হবে| তাহলে আদোনিয় কেন পরবর্তী রাজা হচ্ছে?’ 14 আপনি যখন রাজার সঙ্গে কথাবার্তা বলতে থাকবেন, আমি তখন সেখানে গিয়ে উপস্থিত হব এবং তখন আমি রাজাকে সমস্ত কিছু জানাব, তাতে আপনার কথার সত্যতাও প্রমাণ হবে|” 15 বত্শেবা তখন রাজার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর শয়ন কক্ষে যেখানে শূনেমীযা অবীশগ বৃদ্ধ রাজার পরিচর্য়া করছিল, সেখানে গিয়ে উপস্থিত হল| 16 বত্শেবা রাজার সামনে আনত হবার পর রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “আমি তোমার জন্য কি করতে পারি বল?” 17 বত্শেবা বললেন, “মহাশয, আপনি আপনার প্রভু, ঈশ্বরের নামে শপথ করে আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে, ‘আপনার পর আমার পুত্র শলোমনই রাজা হবে| সে আপনার সিংহাসনে বসবে|’ 18 কিন্তু আপনি বোধ হয় জানেন না আদোনিয় ইতিমধ্যেই রাজা হবার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে| 19 সে মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বহু গরু ও মেষ বলি দিয়ে বড়সড় একটা ভোজসভার আয়োজন করে সেখানে আপনার অন্যান্য সমস্ত পুত্রদের নিমন্ত্রণ করেছিল| সে যাজক অবিয়াথর, য়োয়াব, আপনার সেনাবাহিনীর প্রধানকে এই ভোজসভায নিমন্ত্রণ করলেও আপনার অনুগত পুত্র শলোমনকে নিমন্ত্রণ করে নি| 20 রাজা, এখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা আপনার গতিবিধি লক্ষ্য করছে| আপনার পর কে রাজা হবে, সে বিষয়ে তারা আপনার সিদ্ধান্ত জানতে চায়| 21 আপনার মৃত্যুর আগেই এবিষয়ে আপনাকে অতি অবশ্যই কিছু একটা করতে হবে| তা না হলে, আপনার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে আপনাকে সমাধিস্থ করার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্ত লোকরা শলোমন ও আমাকে অপরাধী বলবে|” 22 বত্শেবা যখন রাজার সঙ্গে এ নিয়ে কথাবার্তা বলছেন, তখন ভাববাদী নাথন রাজার সঙ্গে দেখা করতে এলো| 23 রাজার ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “ভাববাদী নাথন আপনার কাছে এসেছেন|” নাথন রাজার সামনে আনত হয়ে রাজাকে সম্মান দেখিয়ে বলল, 24 “মহারাজ আপনি কি আদোনিয়কে আপনার পরবর্তী রাজা হিসেবে ঘোষণা করেছেন? আপনি কি ঠিক করেছেন এখন থেকে সেই রাজ্য শাসন করবে? 25 আমি একথা বলছি কারণ আদোনিয় আজ উপত্যকায গিয়ে মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বহু গরু ও মেষ বলি দিয়েছে| তারপর যাজক অবিয়াথর, আপনার অন্যান্য পুত্রদের ও সেনাপতিদের সবাইকে ভোজসভায নিমন্ত্রণ করেছে| ওরা সবাই মিলে এখন আদোনিয়র জয়ধ্বনি দিয়ে বলছে, “মহারাজ আদোনিয় দীর্ঘ জীবন লাভ করুন|’ 26 কিন্তু আদোনিয় ভোজসভায আপনার পুত্র শলোমন, যাজক সাদোক, যিহোয়াদার পুত্র বনায বা আমাকে নিমন্ত্রণ করে নি| 27 মহারাজ আপনি কি আমাদের কিছু না জানিয়েই সব ঠিক করে ফেললেন? দয়া করে বলুন, আপনার পর কে রাজা হবে|” 28 তখন রাজা দায়ূদ বললেন, “বত্শেবাকে ভেতরে আসতে বলো|” বত্শেবা এসে রাজার সামনে দাঁড়ালেন| 29 এরপর রাজা দায়ূদ ঈশ্বরকে সাক্ষী করে বললেন, “প্রভু আমাকে জীবনের সমস্ত বিপদ আপদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন| আমি সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নামে য়ে কথা আগে শপথ করেছিলাম সে কথাই আবার বলছি| 30 আমি প্রতিশ্রুতি করেছিলাম য়ে আমার পর তোমরা পুত্র শলোমন রাজা হবে| আমি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করব না| তাই আজও বলছি, আমার পরে শলোমনই আমার সিংহাসনে বসবে|” 31 তখন বত্শেবা রাজার সামনে ভূমিষ্ঠ হয়ে বললেন, “রাজা দায়ূদ দীর্ঘজীবী হোন|” 32 এরপর রাজা দায়ূদ যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন ও যিহোয়াদার পুত্র বনাযকে ডেকে পাঠালেন| তারা তিন জন রাজার সঙ্গে দেখা করতে এলো| 33 রাজা তাদের বললেন, “শলোমনকে আমার নিজের খচ্চরে চড়িয়ে, আমার সমস্ত আধিকারিকবর্গকে নিয়ে গীহোন ঝর্ণার কাছে যাও| 34 সেখানে পবিত্র তেল ছিটিয়ে যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন তাকে নতুন রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করবে| আর তারপর তোমরা শিঙা বাজিযে শলোমনের রাজপদে অভিষিক্ত হবার কথা ঘোষণা করে তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে| 35 এরপর শলোমনই আমার সিংহাসনে বসবে এবং আমার জায়গায় রাজা হবে| আমি শলোমনকে ইস্রায়েল ও যিহূদার শাসক হিসেবে নির্বাচন করলাম|” 36 যিহোয়াদার পুত্র বনায রাজার কথার উত্তরে বলল, “আমেন! ধন্য মহারাজ! প্রভু ঈশ্বর বয়ং য়েন আপনার মুখ দিয়ে একথা বললেন| 37 হে মহারাজ, মহান প্রভু ঈশ্বর বরাবর আপনার সহায় ছিলেন| আমরা আশা করব তিনি একই ভাবে শলোমনের পাশে থাকবেন এবং শলোমনের রাজ্য আপনার রাজ্য থেকে অনেক বড় ও শক্তিশালী হবে|” 38 সাদোক, নাথন, বনায় ও রাজার আধিকারিকবর্গ রাজা দায়ূদের কথা পালন করল এবং শলোমনকে রাজা দায়ূদের খচ্চরে চড়িয়ে গীহোন ঝর্ণায নিয়ে গেল| 39 যাজক সাদোক পবিত্র তাঁবুর থেকে তৈলাধারটি নিজে বহন করে নিয়ে গিয়ে শলোমনের মাথায় প্রথামতো খানিক তেল ছিটিয়ে তাকে রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করল| তখন চতুর্দিকে শিঙা বেজে উঠল এবং চারপাশ থেকে সমস্ত লোকরা চিত্কার করে উঠল, “মহারাজ শলোমন দীর্ঘজীবি হোন!” 40 আনন্দিত ও উত্তেজিত জনতা শলোমনের পেছনে পেছনে শহরে এল| খুশী হয়ে, বাঁশী বাজাতে বাজাতে তারা সকলে এতো শব্দ করছিল য়ে মাটিও কাঁপছিল| 41 এদিকে আদোনিয় ও তাঁর অতিথিরা তখন সবেমাত্র ভোজনপর্ব শেষ করেছে| হঠাত্ তারা সবাই শিঙার শব্দ শুনতে পেল| য়োয়াব বলল, “কিসের শব্দ হচ্ছে? শহরে এতো হৈ চৈ কিসের?” 42 য়োয়াব যখন কথা বলছে তখন যাজক অবিয়াথরের পুত্র য়োনাথন এসে উপস্থিত হল| আদোনিয় তাকে বলল, “এসো, এসো, এখানে এসো! তুমি একজন ভাল ও বিশ্বাসী মানুষ| তুমি নিশ্চয়ই আমার জন্য কোনো সুখবর এনেছো?” 43 য়োনাথন বলল, “আপনার পক্ষে সুখবর কিনা জানি না, তবে রাজা দায়ূদ শলোমনকে নতুন রাজা বলে ঘোষণা করেছেন| 44 রাজা নিজের খচ্চরে শলোমনকে চড়িয়ে যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন ও রাজ আধিকারিকবর্গকে দিয়ে তাঁকে গীহোন ঝর্ণায পাঠিয়েছিলেন| সেখানে যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন তাঁকে রাজপদে অভিষিক্ত করে| তারপর তারা সকলে এক সঙ্গে শহরে ফিরে যায়| লোকরাও সব তাদের পেছন পেছন যায়| এখানে সকলে দারুণ খুশি ও সবাই আনন্দ করছে| আপনারা সেই শব্দই শুনতে পাচ্ছেন| 45 46 এমনকি শলোমন রাজ সিংহাসনেও বসেছেন! রাজার সমস্ত আধিকারিকবর্গ রাজা দায়ূদকে এ কাজের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলছে, ‘মহারাজ দায়ূদ, আপনি এক জন মহান রাজা এবং আমরা প্রার্থনা করি ঈশ্বর শলোমনকে এক জন মহান রাজা করবেন| আমাদের বিশ্বাস প্রভু শলোমনকে আপনার চেয়েও খ্যাতিমান করবেন এবং তাঁর রাজ্য আপনার রাজ্যের থেকেও বড় হবে|’“রাজা দায়ূদও বয়ং সেখানে উপস্থিত ছিলেন| তিনি বিছানা থেকেই শলোমনের সামনে মাথা ঝুঁকিযে বলেছেন, 47 48 “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর ধন্য হলেন! মহিমাময প্রভু আমারই এক সন্তানকে আমার সিংহাসনে স্থাপন করলেন| এই শুভক্ষণ দেখার জন্য তিনি আমায় য়থেষ্ট দিন বাঁচতে দিয়েছেন|”‘ 49 তখন আদোনিয়র সমস্ত অতিথিরা ভয়ে পাংশু হয়ে তাড়াতাড়ি ভোজসভা ছেড়ে চলে গেল| 50 এমন কি আদোনিয় শলোমনের ভয়ে ভীত হয়ে বেদীর কাছে গিয়ে বেদীর কোণগুলিকে ধরলেন| 51 শলোমনকে গিয়ে এক জন খবর দিল, “মহারাজ, আপনার ভয়ে ভীত হয়ে আদোনিয় এখন পবিত্র তাঁবুতে য়জ্ঞবেদীর কোণগুলোকে ধরে আছে| আর সেখান থেকে কিছুতেই বেরোতে চাইছে না| সে বলছে, ‘আগে রাজা শলোমনকে প্রতিশ্রুতি করতে বলো য়ে তিনি আমাকে হত্যা করবেন না|”‘ 52 তখন শলোমন বললেন, “যদি আদোনিয়র আচার আচরণে প্রমাণ হয় য়ে সে একজন সত্ ব্যক্তি, আমি প্রতিশ্রুতি করছি আমি ওর মাথার একগাছি চুল পর্য়ন্ত ছোঁব না| কিন্তু ও যদি গোলমাল সৃষ্টি করে তাহলে ওকে মরতে হবে|” 53 তারপর রাজা শলোমন আদোনিয়কে নিয়ে আসার জন্য একজনকে পাঠালেন| সে আদোনিয়কে রাজা শলোমনের কাছে নিয়ে এলে, আদোনিয় রাজার সামনে অবনত হলেন| শলোমন তাঁকে বললেন, “যাও, বাড়ি যাও|”
1 ইতিমধ্যে দায়ূদের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল| তিনি তখন শলোমনকে ডেকে বললেন, 2 “আমার আর বেশী দিন নেই, সব লোকের মতোই আমিও মারা যাব| কিন্তু তুমি এখন বলবান ও পূর্ণবযস্ক হয়ে উঠেছ| 3 এখন নিষ্ঠার সঙ্গে তোমার প্রভু ঈশ্বরের আজ্ঞা মেনে চল| মোশির বিধিপুস্তকে য়েমন লেখা আছে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর বিধি এবং আদেশ এবং সিদ্ধান্ত ও চুক্তি সতর্ক ভাবে মেনে চলবে| যদি তুমি মেনে চলো তাহলে তুমি তোমার সব কাজে প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হবে| 4 শলোমন, তুমি যদি ঈশ্বরের আজ্ঞাবহ হয়ে তাঁর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করো, তিনিও তাঁর এই প্রতিশ্রুতির কথা মনে রাখবেন| প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘যদি তোমার সন্তানসন্ততিরা সমস্ত হৃদয় দিয়ে এবং নিষ্ঠা সহকারে আমার নির্দেশ অনুযায়ীজীবনযাপন করে তাহলে সদাসর্বদা তোমারই বংশের কেউ না কেউ ইস্রায়েলের রাজ সিংহাসনে আসীন হবে|”‘ 5 দায়ূদ আরও বললেন, “তোমার নিশ্চয়ই মনে আছে, সরূযার পুত্র য়োয়াব আমার সঙ্গে কি করেছিল? সে ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর দুই সেনাপতিকে হত্যা করেছিল| সে নেরের পুত্র অবনেরকে আর য়েথরের পুত্র অমাসাকে হত্যা করেছিল| মনে রেখো, শান্তির সময়ে সে এই দুজনকে হত্যা করেছিল এবং তাদের রক্তে তার পাযের জুতো রঞ্জিত করেছিল| তাকে শাস্তি দেওয়া আমার কর্তব্য| 6 কিন্তু এখন তুমি রাজা| তোমার যা বিবেচনায সঙ্গত বলে মনে হয়, সে ভাবেই ওকে শাস্তি দিও ও সে য়ে হত হয়েছে তা নিশ্চিত কর| বার্দ্ধক্যের সুস্থ স্বাভাবিক মৃত্যু য়েন ও ভোগ করতে না পারে| 7 গিলিয়দের বর্সিল্লযের সন্তানদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করো| তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করো ও তাদের নিমন্ত্রণ করে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করো| কারণ আমি যখন তোমার ভাই অবশালোমের থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম, আমার সেই বিপদের দিনে ওরা আমায় সাহায্য করেছিল| 8 “আর মনে রেখো বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর বহুরীম নিবাসী গেরার পুত্র শিমিযি এখনও কাছে পিঠেই কোথাও আছে| আমি যখন মহনযিমে পালিয়ে যাই সে আমাকে নিদারুণ অভিশাপ দিয়ে অভিশপ্ত করেছিল| পরে যখন যর্দন নদীর তীরে সে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে আমি প্রভুর শপথ করে বলেছিলাম, আমি শিমিযিকে হত্যা করব না| 9 কিন্তু দেখো, ওকে য়েন শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দিও না| তুমি য়থেষ্টই বিচক্ষণ হয়েছ, কি করা দরকার তা তুমি নিজেই বুঝতে পারবে, কিন্তু দেখো ওকে বার্দ্ধক্যের শান্ত মৃত্যু ভোগ করতে দিও না|” 10 এরপর রাজা দায়ূদের মৃত্যু হলে, দায়ূদ শহরে তাঁকে সমাধিস্থ করা হল| 11 দায়ূদ 40 বছর ইস্রায়েলে শাসন করেছিলেন| তিনি হিব্রোণে 7 বছর ও জেরুশালেমে 33 বছর শাসন করেছিলেন| 12 অতঃপর শলোমন রাজা হয়ে তাঁর পিতার সিংহাসনে বসে রাজা দায়ূদের রাজ্য পুরোপুরি নিজের দখলে আনলেন| 13 হগীতের পুত্র আদোনিয় এসময়ে এক দিন শলোমনের মা বত্শেবার সঙ্গে দেখা করতে এলেন| বত্শেবা তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি বন্ধুত্ব ও প্রীতির সম্পর্ক বজায় রাখতে চাও?”আদোনিয় তাঁকে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে বললেন, “এ ব্যাপারে আপনার চিন্তার কোন কারণ নেই| 14 তবে আপনার কাছে আমার কিছু বক্তব্য আছে|”বত্শেবা বলল, “বলো কি ব্যাপার?” 15 আদোনিয় বলল, “আপনার মনে রাখা দরকার য়ে, এক সময়ে এ রাজ্য আমারই ছিল| ইস্রায়েলের লোকরা ভেবেছিল আমিই তাদের রাজা| কিন্তু ঈশ্বর এই অবস্থার পরিবর্তন করেছিলেন এবং শলোমনকে রাজা হিসেবে মনোনীত করেছিলেন| প্রভুর ইচ্ছায আমার ভাই এখন তাদের রাজা| 16 আমার আপনার কাছে একটি প্রার্থনা আছে, দয়া করে আমায় নিরাশ করবেন না|”বত্শেবা জানতে চাইলেন, “বলো কি তোমার ইচ্ছা?” 17 আদোনিয় বলল, “আমি জানি, রাজা শলোমন কখনও আপনার আদেশ অমান্য করবেন না| আপনি অনুগ্রহ করে তাঁকে আমায় শূনেমের অবীশগকে বিয়ে করার সম্মতি দিতে বলবেন|” 18 বত্শেবা বলল, “এ বিষয়ে আগে তাঁকে রাজার সঙ্গে কথা বলতে হবে|” 19 কথা মতো বত্শেবা বিষযটি নিয়ে রাজা শলোমনের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন| শলোমন তাঁকে আসতে দেখে তাড়াতাড়ি নিজের জায়গা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে মাথা ঝুঁকিযে সম্মান জানালেন| তারপর সিংহাসনে বসে ভৃত্যদের তাঁর মায়ের জন্য আরেকটি সিংহাসন আনতে হুকুম দিলেন| বত্শেবা গিয়ে তাঁর পুত্রের ডানপাশে বসলেন| 20 তারপর বললেন, “তোমার কাছে একটা ছোট জিনিস চাইতে এসেছি, আমাকে নিরাশ করো না|”রাজা বললেন, “মা, তুমি আমার কাছে যা খুশি তাই চাইতে পারো, আমি আপত্তি করবো না|” 21 বত্শেবা তখন বললেন, “তাহলে তোমার ভাই আদোনিয়কে শূনেমের অবীশগ বলে সেই মেয়েটিকে বিয়ে করতে অনুমতি দাও|” 22 একথা শুনে শলোমন তাঁর মাকে বললেন, “তুমি শুধু অবীশগকেই আদোনিয়র হাতে তুলে দিতে বলছ কেন? তার চেয়ে বলো না কেন, ওকেই এবার রাজা করে দিই| হাজার হোক ও আমার বড় ভাই, যাজক অবিয়াথর ও য়োয়াবও ওকে সমর্থন করবে|” 23 এরপর ক্রুদ্ধ শলোমন প্রভুর নামে প্রতিশ্রুতি করে বললেন, “আমি প্রতিশ্রুতি করছি, এর মূল্য আদোনিয়কে দিতে হবে| এজন্য ওকে প্রাণ দিতে হবে| 24 প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো আমাকে ইস্রায়েলের রাজা করেছেন, আমার পিতা দায়ূদের রাজ সিংহাসনে আমাকে বসিযেছেন| তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীএ রাজ্য আমার ও আমার পরিবারের| এখন প্রভুর জীবিত থাকাটা য়েমন স্থির নিশ্চিত, তেমনি আমি শপথ নিয়ে বলছি য়ে আদোনিয় আজই মারা যাবে|” 25 এরপর শলোমন, য়েমন ভাবে যিহোয়াদার পুত্র বনাযকে নির্দেশ দিলেন, তেমনি বনায গেলেন এবং আদোনিয়কে হত্যা করলেন| 26 তারপর রাজা শলোমন যাজক অবিয়াথরকে ডেকে বললেন, “তোমাকে আমার হত্যা করা উচিত্, কিন্তু আমি এখন তোমাকে হত্যা করব না, সুতরাং তুমি তোমার বাড়ি অনাথোতে য়েতে পারো, কারণ তুমি আমার পিতা দায়ূদের সঙ্গে পদযাত্রার সময় প্রভুর পবিত্র সিন্দুকটি বয়ে নিয়ে গিয়েছিলে| আর আমি একথাও জানি, আমার পিতার দুঃসময়ে, তুমিও তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে কষ্ট ভোগ করেছিলে| 27 শলোমন অবিয়াথরকে একথাও বললেন য়ে সে আর যাজক হিসেবে প্রভুর সেবা কাজ করতে পারবে না| প্রভু যা বলেছিলেন সেই অনুযায়ীএই ঘটনাটি ঘটেছিল| যাজক এলি ও তার পরিবার সম্পর্কে ঈশ্বর একথা শীলোতে বলেছিলেন| এবং অবিয়াথর এলিরই উত্তরপুরুষ ছিলেন| 28 এখবর পেয়ে য়োয়াব খুব ভয পেয়ে গেলেন| য়োয়াব অবশালোমকে সমর্থন না করলেও আদোনিয়র পক্ষে ছিলেন| তাই য়োয়াব তাড়াতাড়ি প্রভুর তাঁবুতে গিয়ে প্রাণ বাঁচানোর জন্য বেদীর শরণ নিলেন| 29 পরে রাজা শলোমনের কাছে সংবাদ এল য়ে য়োয়াব প্রভুর তাঁবুর বেদীর কাছে আছেন, সুতরাং শলোমন বনাযকে য়োয়াবকে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন| 30 বনায তখন প্রভুর তাঁবুর সামনে গিয়ে বললেন, “রাজার নির্দেশ মেনে তুমি ভালোয ভালোয বেরিয়ে এসো|”কিন্তু য়োয়াব বললেন, “না আমি এখানেই মরতে চাই|”বনায তখন ফিরে গিয়ে রাজাকে য়োয়াব যা বলেছেন তা জানাল| 31 অতঃপর রাজা নির্দেশ দিলো, “তাহলে ও যা বলেছে তাই হোক্| ওকে ওখানেই হত্যা করো আর তারপর ওকে কবর দাও| এক মাত্র তারপরই আমি ও আমার পরিবারের সকলে য়োয়াবের দোষ থেকে মুক্তি পাব, য়েটা সে নিরপরাধ লোকদের হত্যা করার ফলে হয়েছিল| 32 য়োয়াব, যারা ওর থেকে অনেক ভালো লোক ছিল দুই ব্যক্তি, ইস্রায়েলের সেনানায়ক নেরের পুত্র অবনের ও য়েথরের পুত্র যিহূদার সেনাবাহিনীর প্রধান অমাসাকে হত্যা করেছিল| আমার পিতা দায়ূদ সে সময় য়োয়াবের এই অপকর্মের কথা জানতেন না বলে ও রেহাই পেয়ে গিয়েছিল| তাই প্রভু ঐ লোকদের হত্যার জন্য য়োয়াবকে শাস্তি দেবেন| 33 তাকে এবং তার পরিবারের সকলকেই এই কর্মফল ভোগ করতে হবে| কিন্তু ঈশ্বর নিশ্চয়ই দায়ূদ ও তাঁর রাজ পরিবারের উত্তরপুরুষদের ও তাঁদের রাজত্বে শান্তি আনবেন|” 34 তখন যিহোয়াদার পুত্র বনায গিয়ে য়োয়াবকে হত্যা করল| য়োয়াবকে মরুভূমিতে তাঁর বাড়ির কাছে কবর দেওয়া হল| 35 এরপর শলোমন বনাযকে য়োয়াবের জায়গায় সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করলেন| এছাড়াও তিনি অবিয়াথরের জায়গায় সাদোককে নতুন প্রধান যাজক হিসেবে নিয়োগ করলেন| 36 তারপর রাজা শিমিযিকে ডেকে পাঠিয়ে তাকে জেরুশালেমে নিজের জন্য একটা বাড়ি বানিয়ে সেখানেই থাকতে নির্দেশ দিলেন| তিনি বললেন শিমিযি য়েন কোন মতেই শহর ছেড়ে অন্য কোথাও না যায়| 37 রাজা শলোমন তাকে সাবধানও করে দিয়েছিলেন| “যদি তুমি জেরুশালেম ত্যাগ কর এবং কিদ্রোণের খালের ওপাশে পা বাড়াও তবে তোমাকে মরতে হবে এবং তার জন্য তুমি দাযী|” 38 শিমিযি একথায় সম্মতি জানিয়ে বলল, “ঠিক আছে মহারাজ, আমি আপনার নির্দেশ মেনেই চলবো|” তাঁর কথা মতো এরপর দীর্ঘদিন শিমিযি জেরুশালেমেই বাস করেছিল| 39 কিন্তু তিন বছর পরে শিমিযির দুই ক্রীতদাস পালিয়ে গিয়ে মাখার পুত্র গাতীয রাজা আখীশের রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল| 40 একথা জানতে পেরে শিমিযি তার গাধায চড়ে গাতীয রাজা আখীশের কাছ থেকে তাদের ফিরিযে এনেছিল| 41 কিন্তু কেউ একজন গিয়ে একথা শলোমনের কানে তুললে, 42 শলোমন শিমিযিকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “আমি ঈশ্বরের নামে শপথ করে তোমায় বলেছিলাম য়ে তুমি জেরুশালেম শহরের বাইরে পা দিলে তোমার মৃত্যুদণ্ড হবে| আমি তোমাকে সাবধান করে দিয়েছিলাম য়ে তোমার নিজের ভুলের জন্য তোমার মৃত্যু হবে এবং তুমি আমার কথা মেনে চলতে রাজী হয়েছিলে| 43 তুমি আমার নির্দেশ মেনে চলবে বলেও কেন তা অমান্য করলে? কেন নিজের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে বলো? 44 তুমি ভালো করেই জানো বিভিন্ন সময়ে তুমি আমার পিতা দায়ূদেরও বিরুদ্ধাচরণ করেছ| এখন সেই সব পাপাচরণের জন্য প্রভু তোমায় শাস্তি দেবেন| 45 কিন্তু প্রভু আমায় আশীর্বাদ করবেন এবং রাজা দায়ূদের রাজ্য বাধামুক্ত হবে|” 46 একথা বলে রাজা শিমিযিকে হত্যার আদেশ দিলেন বনাযকে| বনায শিমিযিকে হত্যা করল| অবশেষে শলোমন তাঁর রাজ্যের পূর্ণ কর্ত্তৃত্ব লাভ করলেন|
1 শলোমন মিশরের ফরৌণের কন্যাকে বিয়ে করলেন এবং তাঁর কন্যাকে দায়ূদ শহরে নিয়ে এসে, মিশরের রাজা ফরৌণের সঙ্গে একটি চুক্তি স্থাপন করলেন| তখনও পর্য়ন্ত শলোমনের নিজের রাজপ্রাসাদ ও প্রভুর মন্দির বানানোর কাজ শেষ হয় নি| শলোমন সে সময়ে জেরুশালেমের চার পাশে একটি দেওয়াল নির্মাণ করাচ্ছিলেন| 2 য়েহেতু মন্দিরের কাজ তখনও শেষ হয়নি, লোকরা উচ্চস্থানের বেদীতে পশু বলি দিত| 3 শলোমন তাঁর পিতা দায়ূদের সমস্ত বিধি-নির্দেশ পালন করে প্রমাণ করেছিলেন য়ে সত্যি সত্যিই প্রভুর প্রতি তাঁর অটুট ভক্তি ও ভালোবাসা আছে| কিন্তু এছাড়া শলোমন একটি কাজ করতেন যা তাঁকে তাঁর পিতা রাজা দায়ূদ করতে বলেন নি| সেটি হল উচ্চস্থানে বলিদান ও ধূপধূনো দেওয়া| 4 রাজা শলোমন গিবিয়োনে বলি দিতে চাইছিলেন| সে সময় গিবিয়োন ছিল বলিদানের উচ্চস্থানগুলির মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ| শলোমন গিবিয়োনের বেদীতে 1,000 হোমবলি উত্সর্গ করলেন| 5 যখন শলোমন গিবিয়োনে ছিলেন তখন রাতের বেলা প্রভু তাঁকে স্বপ্নে দর্শন দিলেন এবং তাকে একটি বর চাইতে বললেন| 6 তখন শলোমন তাঁকে বললেন, “হে প্রভু আমি আপনার সেবক, আমার পিতা দায়ূদের প্রতি আপনি অসীম করুণা প্রদর্শন করেছেন| তিনি সত্ ও সত্য পথে আপনার নির্দেশ মেনে চলেছিলেন, তাই আপনি তাঁর নিজের পুত্রকে তাঁরই সিংহাসনে বসে রাজ্য শাসন করতে দিয়ে, তাঁর প্রতি আপনার করুণা ও দয়া প্রদর্শন করেছেন| 7 হে প্রভু, আমার পিতার জায়গায় আপনি আমাকে রাজা করেছেন, কিন্তু আমি এখনও প্রায় শিশুর মতোই অজ্ঞ| এ ব্যাপারে আমার মধ্যে রয়োজনীয় অন্তর্দৃষ্টি ও বুদ্ধিমত্তার অভার রযেছে| 8 আমি আপনার দাস, আপনার নির্বাচিত লোকের অন্যতম সেবক| আর এই অংসখ্য় ভক্ত ও সেবকের শাসনভার আজ আমারই ওপর ন্যস্ত| 9 তাই আপনার কাছে আমার অনুনয় ও প্রার্থনা আমাকে আপনি প্রজ্ঞা দিন যাতে আমি রাজার কর্তব্য পালন করতে পারি ও লোকদের বিচার করতে পারি| যদি আমার এই মহত্ জ্ঞান থাকে তাহলে আমি ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে পারব| এই প্রজ্ঞা ব্যতীত আপনার এই অগণিত লোকদের শাসন করা আমার পক্ষে অসম্ভব|” 10 শলোমনের এই প্রার্থনা শুনে প্রভু তাঁর প্রতি খুবই সন্তুষ্ট হলেন| 11 তাই তিনি শলোমনকে বললেন, “তুমি নিজের জন্য দীর্ঘ জীবন বা ধনসম্পদ চাও নি| এমনকি তোমার শত্রুদের মৃত্যু কামনাও করো নি| তুমি শুধু সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার জন্য অন্তর্দৃষ্টি প্রার্থনা করেছ| 12 তাই আমি অতি অবশ্যই তুমি যা প্রার্থনা করেছ তা তোমায় দেব| আমি তোমাকে বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান করে তুলব| আমি তোমাকে এত বিচক্ষণতা দেব যা আজ পর্য়ন্ত কেউ কখনও পায নি এবং ভবিষ্যতেও পাবে না| 13 এছাড়াও তোমাকে পুরস্কৃত করার জন্য আমি তোমাকে সেসব জিনিসও দেব যা তুমি প্রার্থনা করো নি| সারা জীবন তুমি অসীম সম্পদ ও সম্মানের ভাগীদার হবে| তোমার মতো বড় রাজা আর পৃথিবীতে আর কেউ হবে না| 14 শুধু তুমি আমার প্রতি আস্থা রেখো আর তোমার পিতা দায়ূদের মতো আমার আদেশ ও বিধিগুলি মেনে চলো| আর তা যদি করো আমি তোমাকে দীর্ঘ জীবনও দেব|” 15 শলোমনের ঘুম ভেঙ্গে গেল| তিনি বুঝতে পারলেন, স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বর বয়ং তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন| তখন শলোমন জেরুশালেমে ফিরে গেলেন, ঈশ্বরের আদেশ সম্বলিত পবিত্র সিন্দুকটির সামনে দাঁড়ালেন এবং হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন করলেন| এরপর য়ে সমস্ত নেতা ও রাজকর্মচারীরা রাজ্য শাসনের কাজে তাঁকে সহায়তা করেছিলেন তাঁদের সবাইকে নিয়ে একটি ভোজসভার আয়োজন করলেন| 16 একদিন দুটি গণিকা শলোমনের কাছে এসে উপস্থিত হল| 17 তাদের মধ্যে এক জন শলোমনকে বলল, “মহারাজ আমরা দুজনে একই ঘরে বাস করি| আমরা দুজনেই সন্তানসম্ভবা ছিলাম এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় উপস্থিত হয়| ঐ মেয়েটির উপস্থিতিতেই আমি আমার সন্তানের জন্ম দিই| 18 এর ঠিক তিনদিন পরে এই মেয়েটি তার শিশুর জন্ম দেয়| কিন্তু আমরা দুজন ছাড়া আমাদের বাড়ীতে অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তি ছিল না| 19 এক দিন রাতে ওর শিশুটি মারা যায় কারণ ও শিশুর ওপর শুয়েছিল| সে সময় ওর শিশুটি মারা যায়| 20 রাতের অন্ধকারে তখন ও আমার ঘুমন্ত অবস্থার সুয়োগ নিয়ে আমার শিশুটিকে ওর খাটে নিয়ে যায়| আর তারপর মৃত শিশুটিকে আমার পাশে শুইযে দেয়| 21 পরদিন সকালে আমি শিশুকে খাওয়াতে উঠে দেখি আমার পাশে একটি মৃত শিশু শোযানো আছে| তখন আমি খুঁটিযে লক্ষ্য করে দেখি য়ে সেটি মোটেই আমার শিশু নয়|” 22 অন্য মেয়েটি তত্ক্ষনাত্ এর প্রতিবাদ করে বলে, “মোটেই না! জীবন্ত শিশুটিই আমার| মৃতটা তোর!”প্রথম মেয়েটি এর উত্তরে বলল, “মিথ্যে কথা| মৃত শিশুটি তোর, এটা আমার!” এই ভাবে দুজনে রাজার সামনে ঝগড়া করতে থাকে| 23 তখন রাজা শলোমন বলল, “তোমরা দুজনেই বলছো জীবিত শিশুটি তোমার আর মৃত শিশুটি অন্য জনের|” 24 এখন আমি প্রহরীকে আদেশ দিচ্ছি গিয়ে একটা তরবারি নিয়ে আসতে| 25 রাজা শলোমন বললেন, “এবার ঐ শিশুটিকে কেটে দু-আধখানা করো এবং ওদের দুজনকে একটা করে আধখানা টুকরো দিয়ে দাও|” 26 একথা শুনে য়ে মহিলাটির শিশু মারা গিয়েছিল সে বলল, “ঠিক আছে তাই হোক্, তাহলে আমরা কেউই আর ওকে পাব না|” কিন্তু অন্য মহিলাটি, য়ে শিশুটির আসল মা, যার শিশুটির প্রতি পূর্ণ ভালবাসা ও সহানুভূতি ছিল, সে রাজাকে বলল, “মহারাজ দয়া করে শিশুটিকে মারবেন না| ওকেই শিশুটি দিয়ে দিন|” 27 তখন রাজা শলোমন বললেন, “থামো, শিশুটিকে কেটো না| প্রথম জনের হাতেই শিশুটিকে তুলে দাও, কারণ, ঐ হচ্ছে ওর আসল মা|” 28 ইস্রায়েলের সকলে শলোমনের এই বিচারের কথা শুনলো| তারা সকলেই শলোমনের অন্তর্দৃষ্টি ও বুদ্ধিমত্তার জন্য তাঁকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করত| তারা বুঝতে পেরেছিল সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাপারে রাজা শলোমনের অন্তর্দৃষ্টি প্রায় ঈশ্বরের মতোই কাজ করে|
1 সমগ্র ইস্রায়েলের লোকের শাসনকর্তা ছিলেন রাজা শলোমন| 2 শাসনকার্য়্য় পরিচালনা করতে য়ে সমস্ত রাজকর্মচারী তাঁকে সাহায্য করতেন তারা হল:সাদোকের পুত্র যাজক অসরিয়| 3 শীশার দুই পুত্র ইলীহোরফ ও অহিয| এঁরা দুজনে রাজদরবারে সমস্ত ঘটনার বিবরণ নথিভুক্ত করতেন|অহীলূদের পুত্র যিহোশাফট লোকদের ইতিহাস বিষযক টীকা রচনা করতেন| 4 যিহোয়াদার পুত্র বনায ছিল সেনাবাহিনীর প্রধান|সাদোক ও অবিয়াথর যাজকের কাজ করতেন| 5 নাথনের পুত্র অসরিয় জেলা শাসকদের তত্ত্বাবধান করতেন|নাথনের আরেক পুত্র যাজক সাবুদ রাজা শলোমনের পরামর্শদাতা ছিলেন| 6 অহীশারের ওপর রাজপ্রাসাদের সব কিছুর তত্ত্বাবধান করবার দায়িত্ব ছিল|অব্দের পুত্র অদোনীরামের কাজ ছিল শ্রমিকদের খবরদারি করা| 7 সমগ্র ইস্রায়েলকে 12টি জেলায ভাগ করা হয়েছিল| এই জেলাগুলির প্রত্যেকটির শাসন কাজ পরিচালনার জন্য শলোমন নিজে প্রাদেশিক শাসনকর্তা বা জেলা শাসকদের বেছে নিয়েছিলেন| এই সমস্ত প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের ওপর তাদের নিজেদের প্রদেশ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে রাজা ও তাঁর পরিবারকে সেই খাদ্য সরবরাহ করার নির্দেশ ছিল| বছরের 12 মাসের এক একটিতে এই 12 জন প্রদেশকর্তার এক এক জনের দায়িত্ব ছিল রাজাকে খাবার পাঠানো| 8 এই 12 জন প্রাদেশিক শাসনকর্তার নাম নীচে দেওয়া হল:ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের শাসক ছিলেন বিন্-হূর| 9 মাকস, শালবীম, বৈত্-শেমশ ও এলোন বৈত্-হাননের শাসক ছিলেন বিন্-দেকর| 10 বিন্-হেষদ ছিলেন অরুব্বোত, সোখো ও হেফর প্রদেশের শাসনকর্তা| 11 দোর উপগিরি অঞ্চলের শাসনভার ছিল বিন্-অবীনাদবের ওপর| তিনি রাজা শলোমনের কন্যা টাফত্কে বিয়ে করেছিলেন| 12 য়িষ্রিযেলের নিম্নবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত অঞ্চল অর্থাত্ বৈত্-শান থেকে আবেল-মহোলা হয়ে য়ক্মিযাম পর্য়ন্ত বিস্তৃত তানক, মগিদ্দোর শাসক ছিলেন অহীলূদের পুত্র বানা| 13 বিন্-গেবর ছিলেন রামোত্-গিলিয়দের শাসক| গিলিয়দের মনঃশির পুত্র যাযীর সমস্ত শহর ও গ্রামগুলির শাসন কার্য়্য় পরিচালনা করতেন| তিনি অর্গোব জেলার বাশন অঞ্চলেরও শাসনকর্তা ছিলেন| এই অঞ্চলে বড় দেওয়ালে ঘেরা 60টি শহর ছিল| শহরের দরজা বড় করার জন্য পিতলের কব্জা ব্যবহার হতো| 14 ইদ্দোরের পুত্র অহীনাদব ছিলেন মহনযিমের শাসক| 15 নপ্তালির প্রাদেশিক কর্তা অহীমাস বিয়ে করেছিলেন শলোমনের আরেক কন্যা বাসমত্কে| 16 হূশযের পুত্র বানা ছিলেন আশের ও বালোতের শাসক| 17 ইষাখরের প্রদেশকর্তা ছিলেন পারূহের পুত্র যিহোশাফট| 18 এলার পুত্র শিমিযির ওপর বিন্যামীন প্রদেশের দায়িত্ব ছিল| 19 ঊরির পুত্র গেবর গিলিয়দের রাজ্যপাল ছিল| গিলিয়দে যেখানে ইমোরীয়দের রাজা সীহোন ও বাশনের রাজা ওগ বাস করতেন| কিন্তু গেবর ছিল ঐ দেশের রাজ্যপাল| 20 সমুদ্রতীরে ছড়িয়ে থাকা রাশি রাশি বালির মতোই যিহূদা ও ইস্রায়েলে অসংখ্য় মানুষ বাস করত| খেযে পরে, মহাফূর্তিতে ও আনন্দে তারা সকলে দিন কাটাতো| 21 রাজা শলোমন ফরাত্ নদী থেকে পলেষ্টীয়দের দেশ ও মিশরের সীমা পর্য়ন্ত সমস্ত অঞ্চলে তাঁর রাজ্য বিস্তার করেছিলেন| শলোমন যতদিন বেঁচ্ছেিলেন ততদিন এই অঞ্চলের সমস্ত রাজ্যগুলি বশ্যতা স্বীকার করেছিল এবং তারা শলোমনের জন্য উপহার পাঠাত| 22 প্রতিদিন শলোমনের নিজের জন্য ও তাঁর সঙ্গে যারা এক সঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া করতো তাদের সকলের জন্য সব মিলিয়ে প্রায়|150 কে.জি ময়দা,300 কে.জি আটা,10টি হৃষ্টপুষ্ট গরু,20টি সাধারণ গরু,100টি মেষ, হরিণ, খরগোশ, নানান পাখপাখালির মাংস প্রয়োজন হত| 23 24 ঘসা থেকে তিপ্সহ পর্য়ন্ত ফরাত্ নদীর পশ্চিমভাগের সমস্ত অঞ্চল শলোমনের অধীনস্থ ছিল| পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গেও রাজা শলোমনের মৈত্রী ও শান্তির সম্পর্ক বজায় ছিল| 25 শলোমনের রাজত্বকালে দান থেকে বের্-শেবা পর্য়ন্ত যিহূদা ও ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা সুখে ও শান্তিতে জীবনযাপন করতো| তারা নিশ্চিন্ত মনে নিজেদের দ্রাক্ষাক্ষেত বা ডুমুর বাগানে বসে সময় কাটাতে পারত| 26 শলোমনের আস্তাবলে রথ টানার জন্য 4000 ঘোড়া রাখার ব্যবস্থা তো ছিলই, এছাড়াও তাঁর অধীনে ছিল 12,000 অশ্বারোহী সৈনিক| 27 বছরের প্রত্যেকটি মাসে 12জন প্রাদেশিক শাসনকর্তার এক জন শলোমন এবং রাজার টেবিলে ভোজনকারী প্রত্যেকের জন্য নিত্য প্রযোজনীয খাবার সামগ্রী পাঠাতেন| তাদের সকলের জন্য তা প্রচুর পরিমাণ হত| 28 এই সমস্ত প্রাদেশিক শাসনকর্তারা রাজা শলোমনের ঘোড়াগুলির জন্য প্রচুর পরিমাণে খড় ও বার্লি পাঠাতেন| লোকরা এই সমস্ত খড় ও বার্লি আনত| 29 ঈশ্বর শলোমনকে প্রভূত জ্ঞানী করে তুলেছিলেন| শলোমনের বুদ্ধিমত্তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা প্রায় অসম্ভব ছিল| তিনি বহু বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন ও অনেক কিছু গভীর ভাবে বুঝতে পারতেন| 30 প্রাচ্যের সমস্ত মানুষদের জ্ঞানের চেয়েও শলোমনের জ্ঞান বেশী ছিল| এমনকি তা মিশরের সমস্ত বাসিন্দাদের চেয়েও বেশী ছিল| 31 পৃথিবীর য়ে কোন ব্যক্তির চেয়েও তিনি বেশী জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান ছিলেন| ইষ্রাহীর এথন বা মাহোলের পুত্র হেমন, কল্কোল ও দর্দার চেয়েও তাঁর বুদ্ধি ও বিচক্ষণতা বেশী ছিল| ইস্রায়েল ও যিহূদার চারি দিকের সমস্ত দেশগুলিতে রাজা শলোমনের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল| 32 তাঁর জীবদ্দশায় তিনি 1,005টি গান ও 3,000 প্রবাদ বাক্য লিপিবদ্ধ করেছিলেন| 33 প্রকৃতি সম্পর্কেও মহারাজ শলোমনের গভীর জ্ঞান ছিল| শলোমন বিভিন্ন গাছপালা থেকে শুরু করে লিবানোনের সুবিশাল মহীরূহ, দ্রাক্ষাকুঞ্জ, পশু, পাখী, সাপখোপ, সব বিষয়েই শিক্ষাদান করেন| 34 সমস্ত দেশের লোকরা রাজা শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনতে আসত| সমস্ত দেশের রাজারা তাঁদের রাজ্যের জ্ঞানী ব্যক্তিদের শলোমনের কাছে তাঁর জ্ঞানগর্ভ কথা শোনবার জন্য পাঠাতেন|
1 সোরের রাজা হীরম ছিলেন রাজা শলোমনের পিতা দায়ূদের বন্ধু| হীরম যখন খবর পেলেন দায়ূদের পরে শলোমন নতুন রাজা হয়েছেন, তিনি তাঁর দাসদের শলোমনের কাছে পাঠালেন| 2 শলোমন রাজা হীরমকে জানালেন: 3 “আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, আমার পিতা রাজা দায়ূদকে তাঁর চারপাশে অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছিল যত দিন পর্য়ন্ত না প্রভু তাঁকে তাদের উপর বিজয়ী হতে দেন, য়ে কারণে প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের সম্মানে কোনো মন্দির বানানোর সময় পাননি| 4 কিন্তু এখন প্রভু, আমার ঈশ্বরের ইচ্ছায আমার রাজ্যের সর্বত্র শান্তি বিরাজ করছে| আমার কোন শত্রু নেই| আমার প্রজাদেরও কোন বিপদের সম্ভাবনা নেই| 5 “প্রভু আমার পিতাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘তোমার পরে আমি তোমার পুত্রকেই রাজা করবো, আর সে আমার জন্য একটা মন্দির বানাবে| তাই আমার আন্তরিক ইচ্ছা প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমি এবার সেই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করব| 6 আর একাজে আমি আপনার সাহায্য চাই| এর জন্য আপনি দয়া করে লিবানোনে আপনার লোকজন পাঠান| তারা সেখানে এসে আমার এই কাজের জন্য এরস গাছ কাটবে| আমার নিজের ভৃত্যরাও আপনার লোকদের সঙ্গে হাত লাগাবে| একাজের জন্য আপনার ভৃত্যদের য়ে পারিশ্রমিক দেওয়া উচিত্ বলে আপনি মনে করবেন আমি তাই দেব, কিন্তু আপনার সাহায্য অবশ্যই চাই| আমাদের এখানকার ছুতোররা সীদোনের ছুতোরদের মতো দক্ষ নয়|” 7 হীরম শলোমনের এই অনুরোধ শুনে খুবই খুশি হলেন| তিনি আনন্দিত হয়ে বললেন, “প্রভুকে আমি আমার অশেষ ধন্যবাদ জানাই, কারণ এই মহান সাম্রাজ্য শাসনের জন্য তিনি রাজা দায়ূদকে এক জন বুদ্ধিমান পুত্র উপহার দিয়েছেন|” 8 এরপর হীরম শলোমনকে খবর পাঠালেন, “তোমার অনুরোধের কথা জানলাম| তোমার যতগুলি এরস গাছ ও দেবদারু গাছের প্রয়োজন আমি তোমায় দেব| 9 আমার ভৃত্যরা সেগুলো লিবানোন থেকে সমুদ্রের ধার পর্য়ন্ত আনার পর একসঙ্গে বেঁধে তুমি যেখানে চাও সেখানেই ভেলা করে সমুদ্রের কিনারা বেযে ভাসিযে দেব| তারপর আমি ভেলাগুলো সরিয়ে নেবার পর তুমি গাছগুলো নিয়ে নিতে পার| এবং আমার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করাই হবে আমার প্রতি তোমার অনুগ্রহ|” 10 একাজের জন্য শলোমন প্রতি বছর হীরম ও তাঁর পরিবারবর্গের জন্য প্রায় 1,20,000 বুশেল গম, 1,20,000 গ্য়ালন খাঁটি তেল পাঠাতেন| 11 12 প্রতিশ্রুতি মতো প্রভু শলোমনকে অন্তর্দৃষ্টি ও জ্ঞান দিয়েছিলেন এবং রাজা হীরম ও শলোমনের মধ্যে শান্তি বজায় ছিল| তাঁরা দুজনে নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করেন| 13 রাজা শলোমন ইস্রায়েলের 30,000 ব্যক্তিকে তাঁর কাজে সহায়তার জন্য নিয়োগ করলেন| 14 তিনি এই সমস্ত লোকদের খবরদারি করার জন্য অদোনীরাম নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেন| শলোমন এই 30,000 লোককে 10,000 লোকের তিনটি দলে ভাগ করে দিয়েছিলেন| লিবানোনে এক মাস কাজ করবার পর প্রত্যেকটি দলের লোকরা বাড়ী য়েত এবং দু মাস বিশ্রাম নিত| 15 এছাড়াও শলোমন পার্বত্য অঞ্চলের 80,000 লোককে এই কাজে য়োগ দিতে বাধ্য করেন| এদের কাজ ছিল পাথর কাটা| আর আরো 70,000 লোক সেই পাথর বয়ে নিয়ে য়েত| 16 এদের সকলের তদারকির জন্য নিযুক্ত হয়েছিল আরো 3,300 জন| 17 রাজা শলোমন শ্রমিকদের মন্দিরের ভিত বানানোর জন্য বড় দামী পাথর কাটার নির্দেশ দিয়েছিলেন| এই সমস্ত পাথরগুলি খুব সাবধানে কাটা হত| 18 তারপর শলোমন ও হীরমের মিস্ত্রিরা আর বিব্লসের লোকরা এইসব পাথর খোদাই করত| তারা মন্দিরের জন্য রয়োজনীয় তক্তা ও পাথর বানাত|
1 ইস্রায়েলের লোকরা মিশর থেকে চলে আসার 480 বছরপরে এবং তাঁর রাজত্বের চার বছরের মাথায়, রাজা শলোমন ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন| এটি ছিল ঐ বছরের দ্বিতীয় মাস বা সিব মাস| 2 মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ছিল 60 হাত, প্রস্থে 20 হাত এবং উচ্চতায় 30 হাত| 3 মন্দিরের সামনেই 20 হাত দীর্ঘ ও 10 হাত চওড়া একটি বারান্দা ছিল| 4 মন্দিরের গায়ে কয়েকটা জানালা ছিল, য়েগুলোর ভেতরের অংশ বাইরের তুলনায় চওড়া| 5 অতঃপর শলোমন মূল মন্দিরের চারপাশ ঘিরে একটার ওপর আর একটা একসারি ঘর তৈরী করলেন| এগুলো প্রায় তিনতলা পর্য়ন্ত উঁচু ছিল| 6 ঘরগুলো মন্দিরের দেওয়াল সংলগ্ন হলেও ঘরের কড়ি-বরগাগুলো মন্দিরের দেওয়ালের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল| মন্দিরের দেওয়ালটি ওপরের দিকে ক্রমশঃ সরু হয়ে উঠেছিল, অতএব এই ঘরগুলোর এক দিকের দেওয়াল ঠিক নীচের ঘরের দেওয়ালের থেকে সরু হয়ে গিয়েছিল| একদম নীচের তলার ঘরের প্রস্থ ছিল 5 হাত, মাঝের ঘরের প্রস্থ ছিল প্রায় 6 হাত এবং একেবারে ওপরের ঘরের প্রস্থ ছিল প্রায় 7 হাত| 7 দেওয়ালগুলো বানানোর জন্য মিস্ত্রিরা বড় পাথর ব্যবহার করেছিল| এই সব পাথর য়েখান থেকে আনা সেখানেই কেটে আনা হয়েছিল বলে মন্দির প্রাঙ্গণে হাতুড়ি, কুড়ুল বা কোন রকমের আওয়াজ পাওয়া য়েত না| 8 নীচের ঘরগুলোয় প্রবেশদ্বার ছিল মন্দিরের দক্ষিণ দিক থেকে| তারপর ভেতরে ঢোকার পর সিঁড়ি ওপরদিকে উঠে গিয়েছিল একতলা ও দোতলা পর্য়ন্ত এবং সেখান থেকে তিনতলা পর্য়ন্ত| 9 শলোমনের মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হল| মন্দিরের প্রতিটি অংশ এরস গাছের তক্তা দিয়ে ঢাকা ছিল| 10 মন্দিরের চার পাশের ঘর বানানোর কাজও শেষ হল| এই ঘরগুলো প্রায় 5হাত উঁচু ছিল| এই সব ঘরের এরস কাঠের কড়ি মন্দিরকে ছুঁযে থাকত| 11 প্রভু শলোমনকে বলেছিলেন, 12 “যদি তুমি আমার বিধি এবং নির্দেশগুলি মেনে চলো তাহলে আমি তোমার যা যা করব বলে তোমার পিতা দায়ূদকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা পালন করব| 13 এছাড়াও তুমি য়ে মন্দির তৈরী করছ সেখানে ইস্রায়েলের সন্তান সন্ততিদের মধ্যে বাস করব| ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের কখনও ছেড়ে যাব না|” 14 শলোমন মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ করলেন| 15 মন্দিরের ভেতরের পাথরের দেওয়াল ও ছাদ এরস কাঠে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল| মন্দিরের মেঝে ঢাকা হয়েছিল দেবদারু গাছের তক্তা দিয়ে| 16 মন্দিরের পেছন দিকে 20 হাত দীর্ঘ একটি ঘর বানানো হয়েছিল| এই ঘরটি ছিল মন্দিরের পবিত্রতম স্থান| এই ঘরের দেওয়াল মেঝের থেকে ছাদ পর্য়ন্ত এরস কাঠে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল| 17 পবিত্রতম স্থানের সামনে ছিল মন্দিরের মূল অংশ বা ঘরটি, যার দৈর্ঘ্য প্রায় পৌনে 40 হাত| 18 এখানকার দেওয়াল এবং ছাদও একই ভাবে এরসকাঠে ঢাকা ছিল| দেওয়ালের কোন পাথরই দেখা য়েত না| দেওয়ালে এরস কাঠের নানা ধরণের ফুল ও লতাপাতার ছবি খোদাই করা ছিল| 19 প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি রাখার জন্য শলোমন মন্দিরের একেবারে পেছনদিকে বিশেষ ভাবে ঘরটি নির্মাণ করেছিলেন| 20 এই ঘরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা ছিল 20 হাত| 21 শলোমন ঘরটি আগাগোড়া বিশুদ্ধ সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন| তিনি ঘরের সামনে ধূপধূনো দেবার জন্য একটি বেদী তৈরী করেছিলেন| তিনি বেদীটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন এবং তার চারপাশে সোনার হার জড়িয়ে দিয়েছিলেন| এছাড়াও ঘরটিতে সোনায মোড়া দুই করূব দূতের মূর্ত্তি ছিল| 22 বস্তুত গোটা মন্দিরটাই সোনায় মোড়া ছিল| পবিত্রতম স্থানের সামনের বেদীটিও ছিল সোনায় ঢাকা| 23 মন্দির নির্মাতারা 10 হাত দীর্ঘ করূব দূতের ডানাওযালা মূর্ত্তি দুটো প্রথমে বিশেষ এক ধরণের গাছের কাঠে বানিয়ে তারপর সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিল| 24 মূর্ত্তি দুটোর প্রত্যেকটি ডানার দৈর্ঘ্য প্রায় 5 হাত করে অর্থাত্ ডানার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্য়ন্ত মূর্ত্তিদুটো ছিল প্রায় 10 হাত চওড়া| গর্ভগৃহের পাশাপাশি, সম দৈর্ঘ্যের এই মূর্ত্তি দুটো দাঁড় করানো থাকত| 25 26 27 28 দুটো করূব দূত সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিল| 29 মন্দিরের মূল ঘরটির দেওয়ালের ওপর এবং মন্দিরের অন্তবর্ত্তী ঘরটির দেওয়ালের তালগাছ বিভিন্ন ফুল, লতাপাতা ও করূব দূতের ছবি খোদাই করা ছিল| 30 দুটো ঘরের মেঝেই সোনায় ঢাকা ছিল| 31 কর্মীরা জিতগাছের কাঠ দিয়ে দুটো দরজা বানিয়েছিল এবং সে দুটি পবিত্রতম স্থানের প্রবেশ পথে বসিযে দিয়েছিল| দরজার পথে চারপাশের কাঠামো 1/5 হাত চওড়া ছিল| 32 তারা জৈতুন গাছের কাঠ থেকে দুটো দরজা তৈরী করল| মিস্ত্রির সোনার পাতে মোড়া দরজা দুটোয খোদাই করা ছিল তালগাছ বিভিন্ন লতাপাতা ও করূব দূতের ছবি| 33 মূল ঘরটিতে প্রবেশ করবার জন্যও তারা দরজা বানিয়েছিল| একটি চার কোণা দরজার কাঠামো বানানোর জন্য তারা জিতগাছের কাঠ ব্যবহার করেছিল| যা চওড়ায ছিল চার ভাগের এক ভাগ| 34 সেই কাঠামোয দেবদারু কাঠের দুটি দরজা বসানো হয়| এই প্রত্যেকটি দরজা আবার দুভাগে মুড়ে ভাঁজ হতো| এগুলোর ওপরেও একই রকম করূব দূতের ছবি খোদাই করে সোনায় মোড়া ছিল| 35 36 এরপর তিনসারি কাটা পাথরের দেওয়াল ও একসারি এরস কাঠের দেওয়াল দিয়ে ঘিরে মন্দিরের ভেতরের অংশ তৈরী করা হল| 37 সিব মাসে শলোমনের চতুর্থ বছরের রাজত্বের দ্বিতীয় মাসে শুরু করে বুল মাসে, 38 অর্থাত্ তাঁর একাদশ বছরের অষ্টম মাসের রাজত্বের সময় মন্দিরটির নির্মাণ কার্য়্য় শেষ হয়| য়ে ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সাত বছর সময় নিয়ে ঠিক সে ভাবে মন্দিরটি বানানো হয়েছিল|
1 রাজা শলোমন তাঁর নিজের জন্য একটি রাজপ্রাসাদও বানিয়েছিলেন| প্রাসাদটি বানাতে 13 বছর সময় লেগেছিল| 2 এছাড়াও তিনি “লিবানোনের বাগান” নামে একটি বাড়ি বানিয়েছিলেন| এই বাড়ীটির দৈর্ঘ্য ছিল 100 হাত, প্রস্থ 50 হাত ও উচ্চতা 30 হাত| বাড়ীটায এরস কাঠের চারসারি স্তম্ভ ছিল| স্তম্ভগুলির মাথায় কাঠের আচ্ছাদন ছিল| 3 স্তম্ভের শীর্ষভাগে ছিল সারি সারি কড়ি বর্গা| আর তার ওপর ছাদের জন্য এরস তক্তা বসানো হয়েছিল| একেকটি স্তম্ভের ওপর 15টি কড়ি মিলিয়ে মোট 45টি কড়ি বসানো ছিল| 4 প্রত্যেকটি ধারের দেওয়ালে তিন সারি করে মুখোমুখি জানালা বসানো ছিল| 5 প্রত্যেক সারির শেষে দরজা ছিল| দরজাগুলোর মুখ এবং কাঠামো ছিল চার কোণা| 6 এছাড়া শলোমন 50 হাত লম্বা ও 30 হাত চওড়া একটি “ঝুলন্ত বারান্দা” বানিয়েছিলেন| বারান্দার সামনে একটা ছাদ ছিল য়েটা অনেক থাম বা খিলানকে অবলম্বন করেছিল| 7 লোকের বিচার করার জন্য শলোমন একটি “বিচার কক্ষও” বানিয়েছিলেন| এই ঘরের আগাগোড়া এরস কাঠে মোড়া ছিল. 8 শলোমনের নিজের বাসগৃহটি এই বিচারকক্ষের ভেতরে ছিল| এই গৃহটি বিচারকক্ষের মতোই ছিল| তিনি তাঁর স্ত্রী, মিশরের রাজার মেয়ের জন্যও একই রকম একটা গৃহ বানিয়ে দিয়েছিলেন| 9 প্রত্যেকটি বাড়ী মূল্যবান পাথরে তৈরী হয়েছিল| বিশেষ এক ধরণের করাতের সাহায্যে প্রথমে পাথরগুলোকে সঠিক মাপে সামনে ও পেছনে কেটে নেওয়া হত| একেবারে বাড়ির ভিত থেকে দেওয়ালের মাথা পর্য়ন্ত এইসব দামী পাথর বসানো হত| এমনকি উঠোনের চারপাশের দেওয়ালগুলোও এই সমস্ত দামী পাথরে বানানো হয়েছিল| 10 বাড়ির ভিতগুলো য়ে সমস্ত বড় বড় দামী পাথরে বানানো হত সেগুলোর দৈর্ঘ্য ছিল 10 হাত এবং কয়েকটি ছিল 8 হাত| 11 ঐসব পাথরের ওপর ছিল অন্যান্য মূল্যবান পাথর এবং এরস গাছের তৈরী থাম| 12 রাজপ্রাসাদের আঙ্গিনা থেকে শুরু করে মন্দির প্রাঙ্গণ, মন্দিরের বারান্দা, ঘরের চারপাশে তিন সারি পাথর ও এক সারি এরস কাঠের দেওয়াল ছিল| 13 রাজা শলোমন খবর পাঠিয়ে সোর থেকে হীরম নামে এক ব্যক্তিকে জেরুশালেমে নিয়ে আসেন| 14 হীরমের মা ছিলেন নপ্তালির এক ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীর মহিলা| তাঁর মৃত পিতা ছিলেন সোরের বাসিন্দা| হীরম ছিল পিতলের জিনিসপত্রের দক্ষ কারিগর| এ কারণেই শলোমন হীরমকে ডেকে পাঠিয়ে পিতলের কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন| যা কিছু পিতলের কাজ সে সবই হীরম করেছিল| 15 হীরম প্রায় 18 হাত দীর্ঘ, 12 হাত পরিধিযুক্ত এবং 3 ইঞ্চি পুরু পিতলের দুটো ফাঁপা স্তম্ভ বানিয়েছিল| 16 এছাড়া হীরম মন্দিরের জন্য 5 হাত উচ্চ খাঁটি পিতলের দুটি রাজস্তম্ভ বানিয়েছিল এবং তাদের স্তম্ভগুলির মাথায় বসিযেছিল| 17 এরপর হীরম এই স্তম্ভগুলি ঢাকার জন্য দুটো শিকলের জাল বানায়| 18 তারপর সে ডালিমের মত দেখতে পিতলের দুসারি ফুল বানায়| এগুলি প্রতিটি স্তম্ভের জালের ওপর এমন ভাবে রাখা হয় য়ে স্তম্ভগুলির চূড়া ঢাকা পড়ে যায়| 19 ফলতঃ স্তম্ভগুলির সওযা হাত থেকে 5 হাত পর্য়ন্ত লম্বা শিখরগুলি ফুলের মত দেখতে লাগল| স্তম্ভ চূড়াগুলো স্তম্ভের উপর বাটির মত দেখতে জালে বসানো হয়েছিল| ওখানে স্তম্ভ চূড়াগুলোর চার পাশে 20 টা ডালিম সারিবদ্ধভাবে বসানো ছিল| 21 হীরম পিতল নির্মিত মন্দিরের বারান্দাতে দুটি স্তম্ভ স্থাপন করল| দক্ষিণ দিকের স্তম্ভটিকে বলা হত যাখীন| উত্তর দিকের স্তম্ভটিকে বলা হত বোযস| 22 পুষ্পাকৃতি স্তম্ভ চূড়া দুটোকে স্তম্ভের মাথায় বসিযে স্তম্ভের কাজ শেষ করা হয়| 23 অতঃপর হীরম পিতল দিয়ে গোলাকার একটা জলাধার বানালো, যার নাম দেওয়া হল “সমুদ্র|” এটির পরিধি ছিল 30 হাত, ব্যাস ছিল 10 হাত ও গভীরতা ছিল 5 হাত| 24 জলাধারটি ঘিরে পিতলের একটি ফালি বসানো ছিল| এই ফালিটির তলায় জলাধারের গায়ে দুসারি পিতলের লতাপাতার নকশা কাটা ছিল| 25 আর গোটা জলাধারটি বসানো ছিল 12টি পিতলের তৈরী ষাঁড়ের পিঠে 12টি ষাঁড়ের তিনটির মুখ ছিল উত্তরমুখী, তিনটির দক্ষিণমুখী, তিনটির পূর্বমুখী ও বাকী তিনটির পশ্চিমমুখী| 26 জলাধারটির চারিধার 3 ইঞ্চি পুরু| জলাধারের কাণা পানপাত্রের কাণার সদৃশ অথবা ফুলের পাপড়ির মতো ছিল| জলাধারটিতে প্রায় 11,000 গ্য়ালন জল ধরত| 27 এরপর হীরম 10টি পিতলের ঠেলা বানালো| প্রত্যেকটি ঠেলা ছিল 4 হাত লম্বা, 4 হাত চওড়া আর উচ্চতায় 3 হাত| 28 ঠেলাগুলি কাঠামোয বসানো চৌকোণা তক্তা দিয়ে বানানো হয়েছিল, 29 যার ওপর পিতলের সিংহ, ষাঁড় ও করূব দূতের প্রতিকৃতি খোদাই করা ছিল| এইসব প্রতিকৃতির ওপরে ও নীচে নানান ফুলের নকশা কাটা হয়েছিল| 30 প্রতিটি ঠেলায 4টি করে পিতলের চাকা ছিল| কোণায ছিল একটি বড় পাত্র রাখার মতো পিতলের কয়েকটি পাযা, য়েগুলোর গায়ে নানা ধরণের ফুল লাগানো হয়েছিল| 31 বাটিগুলির প্রায় 1 হাত ওপরে একটি নকশা খোদাই করা কাঠামো ছিল| বাটিগুলির মুখ ছিল গোল, ব্যাস 1.5 হাত| কাঠামোটি ছিল চৌকোণা, গোল নয়| 32 কাঠামোর নীচের দিকে চারটি চাকা ছিল| চাকাগুলির ব্যাস 1.5 হাত| চাকার মধ্যের দণ্ডগুলি ঠেলা গাড়ীর সঙ্গে একসঙ্গেই যুক্ত ছিল| 33 এই চাকাগুলো ছিল রথের চাকার মতো এবং চাকার সব কিছুই ছিল পিতলে বানানো| 34 পাত্র ধরে রাখার পাযা চারটি প্রত্যেকটা ঠেলার চারকোণায বসানো ছিল| এগুলোও ঠেলার সঙ্গে একই ছাঁচে বসানো হয়| 35 প্রত্যেকটা ঠেলার ওপরের দিকে পিতলের একটা করে ফালি বসানো ছিল| এই ফালিটাও ছিল একই ছাঁচে বানানো| 36 ঠেলার চারপাশে এবং কাঠামোর গায়ে সিংহ, তালগাছ, করূব দূত ইত্যাদির ছবি খোদাই করা ছিল| গোটা ঠেলার যেখানেই জায়গা ছিল সেখানেই এই সব খোদাই করে দেওয়া হয়| আর ঠেলার চতুর্দিকে ফুলের নকশা খোদাই করে দেওয়া হয়েছিল| 37 হীরম একই রকম দেখতে মোট 10টি ঠেলা বানিয়েছিল| এই প্রত্যেকটা ঠেলাই পিতল দিয়ে তৈরী একই ছাঁচে ফেলে বানানো হয়েছিল, য়ে কারণে এই সব কটাই এক রকম দেখতে ছিল| 38 এছাড়াও হীরম প্রত্যেকটা ঠেলার জন্য একটা করে মোট 10টি বড় বাটি বানিয়েছিল| য়েগুলো প্রায় 4 হাত করে চওড়া ছিল এবং এই পাত্রগুলোয 230 গ্য়ালন পর্য়ন্ত পানীয় ধরত| 39 হীরম ঠেলাগুলোর পাঁচটি রেখেছিল মন্দিরের উত্তর দিকে এবং পাঁচটি মন্দিরের দক্ষিণ দিকে| আর বড় পাত্রটিকে মন্দিরের দক্ষিণপূর্ব কোণায বসিযেছিল| 40 এছাড়াও শলোমনের নির্দেশ মতো অজস্র পাত্র, ছোট হাতা, ছোট বাটি যা কিছু তাকে বানাতে বলা হয়েছিল সে বানিয়েছিল| প্রভুর মন্দিরে হীরম যা কিছু বানিয়েছিল তার তালিকা দেওয়া হল:2টি স্তম্ভ, স্তম্ভের ওপরে বসানোর জন্য বাটির মতো দেখতে2টি স্তম্ভ চূড়া, গম্বুজগুলো ঘেরার জন্য2টি জাল, জালে লাগানোর জন্য400টি ডালিম| প্রতিটি জালের জন্য 2 সারি ডালিম ছিল যাতে স্তম্ভগুলির মাথার ওপরের গম্বুজ ঢাকা পড়ে, একটা বাটি সহ 10টি ঠেলা, একটি বড় চৌবাচ্চা যার নীচে ছিল 12টি ষাঁড়, ছোট হাতা, ছোটখাটো পাত্র ও প্রভুর মন্দিরের জন্য রয়োজনীয় অন্যান্য বাসনকোসন|শলোমন যা যা চেয়েছিলেন, হীরম তার সবই বানিয়ে দিয়েছিল চক্চকে পিতল দিয়ে| 41 42 43 44 45 46 পিতল দিয়ে এতো বেশী জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল য়ে শলোমন কখনও এসব ওজন করার চেষ্টা করেন নি| শলোমন এসবই য়র্দ্দন নদীর সুক্কোত্ ও সর্ত্তনের মধ্যবর্তী অঞ্চলে বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন| এই সব জিনিসই পিতল গলিযে ছাঁচে ঢেলে বসানো হয়| 47 48 শলোমন তাঁর মন্দিরের জন্য অনেক জিনিসই সোনা দিয়ে বানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন| মন্দিরের য়েসব জিনিস শলোমন সোনা দিয়ে বানিয়েছিলেন সেগুলো হল:সোনার বেদী,একটি সোনার টেবিল (যার ওপরে সাজিযে ঈশ্বরকে রুটির নৈবেদ্য দেওয়া হত),পবিত্রতম স্থানের উত্তর ও দক্ষিণে পাঁচটি পাঁচটি করে মোট 10টি বাতিদান,পবিত্রতম স্থানের উত্তর ও দক্ষিণের জন্য 5টি করে চিমটে, সোনার বাটি,কব্জাসমূহ, ছোট বাটি, পবিত্রতম স্থান ও মূল ঘরটির দরজার জন্য সোনার কপাট| 49 50 51 এমনি করে শেষ পর্য়ন্ত শলোমন প্রভুর মন্দিরের জন্য যা যা করতে চেয়েছিলেন সেই কাজ শেষ হল| এরপর তাঁর পিতা রাজা দায়ূদ মন্দিরের জন্য য়ে সব জিনিস তাঁর কোষাগারে রেখে দিয়েছিলেন, শলোমন সেই সমস্ত জিনিস মন্দিরে নিয়ে এলেন| সোনা ও রূপো তিনি প্রভুর মন্দিরের কোষাগারে তুলে রাখলেন|
1 এরপর রাজা শলোমন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তি, পরিবারগোষ্ঠীর প্রধান ও নেতাদের তাঁর কাছে জেরুশালেমে ডেকে পাঠালেন| শলোমন দায়ূদ নগরী থেকে সাক্ষ্যসিন্দুকটি মন্দিরে আনার সময় তাঁর সঙ্গে য়োগ দেবার জন্য এই সব ব্যক্তিদের ডেকে পাঠিয়ে ছিলেন| 2 অতঃপর এথানীম মাসে অর্থাত্ সপ্তম মাসে ফসল সঞ্চয়ের উত্সবের সময় ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা এসে রাজা শলোমনের সঙ্গে য়োগদান করল| 3 সমস্ত প্রবীণরা এসে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানোর পর যাজকরা 4 সেই প্রভুর পবিত্র সিন্দুক, ঈশ্বরের উপাসনার জন্য ব্যবহৃত পবিত্র তাঁবুটি ও তাঁবুর জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে চলল| লেবীয়রা এই কাজে যাজকদের সাহায্য করেছিল| 5 রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দারা সেই পবিত্র সিন্দুকের সামনে একত্রিত হবার পর অগণিত পশু বলি দেওয়া হল| 6 তারপর যাজকরা প্রভুর এই পবিত্র সিন্দুকটিকে মন্দিরের পবিত্রতম স্থানে যেখানে সিন্দুক রাখার জায়গা সেখানে স্থাপন করল| 7 সিন্দুকটিকে করূব দূতদের মূর্ত্তির ডানার তলায় এমনভাবে রাখা হল, যাতে দেবদূতদের ছড়ানো ডানা সেই সিন্দুকটা ও সিন্দুকটার বহন-দণ্ডের ওপর মেলা থাকে| 8 বহন-দণ্ডগুলো খুবই লম্বা ছিল| পবিত্রতম স্থানের পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে যদিও বহনদণ্ডগুলি দেখা য়েত, বাইরে থেকে এই দণ্ডগুলি দেখা য়েত না| এমনকি দণ্ডগুলি এখনও সেই একই জায়গায় রাখা আছে| 9 সিন্দুকের মধ্যে কেবল দুটি পবিত্র প্রস্তর ফলক রাখা ছিল| প্রস্তর ফলক দুটোই মোশি, হোরেব বলে একটা জায়গায় এই সিন্দুকের মধ্যে ভরে রেখেছিলেন| মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর ইস্রায়েলের বাসিন্দারা ঈশ্বরের সঙ্গে একটি চুক্তির ফলস্বরূপ হোরেব নামে জায়গাটিতে থাকতে বাধ্য হয়েছিল| 10 যাজকরা পবিত্র সিন্দুকটিকে পবিত্রতম স্থানের পবিত্র জায়গায় রেখে বেরিয়ে আসার পর, প্রভুর মন্দিরটি অলৌকিক মেঘেভরে গেল| 11 মন্দিরটি প্রভুর মহিমাযভরে যাওয়ায় যাজকরা তাঁদের কাজ শেষ করতে পারলেন না| 12 তখন শলোমন বললেন:“প্রভু আকাশের ঐ জাজ্বল্যমান সূর্য় নিজেই গড়েছেন, কিন্তু তিনি থাকবার জন্য ঘন মেঘকে বেছে নিয়েছেন| 13 হে প্রভু, চির দিন তোমার থাকার জন্য আমি এই সুন্দর মন্দিরটি বানিয়েছি|” 14 ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা তখন সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাই রাজা শলোমন তাদের দিকে ফিরে, ঈশ্বরকে তাদের আশীর্বাদ করতে অনুরোধ করলেন| 15 তারপর শলোমন এক সুদীর্ঘ মন্ত্রোচ্চারণে প্রভুর প্রার্থনা করলেন| তিনি বললেন, “ধন্য প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর মহামহিম| আমার পিতা দায়ূদকে তিনি য়ে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সবই তিনি পালন করেছেন| প্রভু আমার পিতাকে বলেছিলেন, 16 “আমি আমার সমস্ত লোকদের, ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে নিয়ে এসেছি, কিন্তু এখনও পর্য়ন্ত আমি আমার মন্দির বানানোর জন্য ইস্রায়েলের কোন নগর বেছে নিই নি| আর আমার লোকদের ইস্রায়েলীয়দের পরিচালনার জন্য কোনো ব্যক্তিকে মনোনীত করি নি| এবার আমি আমার উপাসনার জন্য জেরুশালেম শহরকে বেছে নিলাম, আর দায়ূদকে বেছে নিলাম আমার লোকদের, ইস্রায়েলীয়দের শাসন করার জন্য|’ 17 “আমার পিতা দায়ূদ প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য একটি মন্দির বানাতে খুবই উত্সুক ছিলেন| 18 কিন্তু প্রভু, আমার পিতা দায়ূদকে বললেন, ‘আমি জানি, আমার প্রতি তোমার আনুগত্য প্রকাশের জন্য তুমি একটা মন্দির বানাতে চাও| খুবই ভালো কথা, 19 কিন্তু তোমাকে নয়, আমি এই মন্দির বানানোর জন্য তোমার পুত্রকে বেছে নিয়েছি| সে-ই এই মন্দির বানাবে|’ 20 “প্রভু য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আজ তিনি সেই কথা রাখলেন| আমার পিতা দায়ূদের জায়গায় এখন আমি রাজা হয়েছি| প্রভুর প্রতিশ্রুতি মতো আমি এখন ইস্রায়েল শাসন করি এবং প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য আমিই এই মন্দির বানিয়েছি| 21 পবিত্র এই সিন্দুকটি রাখার জন্য আমি মন্দিরের ভেতর একটা জায়গা রেখেছি| ঐ পবিত্র সিন্দুকের ভেতরে প্রভুর সঙ্গে আমাদের পূর্বপুরুষদের য়ে চুক্তি হয়, তা রাখা আছে| আমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে নিয়ে আসার সময়, প্রভু তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করেছিলেন|” 22 তারপর শলোমন প্রভুর বেদীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন আর সবাই তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়াল| শলোমন তাঁর হাত প্রসারিত করলেন, আকাশের দিকে তাকালেন 23 এবং বললেন:“হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, পৃথিবীর এই আকাশে এবং এই পৃথিবীতে আপনার মতো কোন ঈশ্বরই নেই| আপনি আপনার লোকদের সঙ্গে করুণাবশতঃ চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন এবং আপনি আপনার প্রতিশ্রুতি রেখেছেন| য়ে সমস্ত লোক আপনাকে অনুসরণ করে আপনি তাদের সহায় হয়ে থাকেন| 24 আপনি আপনার সেবক আমার পিতা দায়ূদকে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রেখেছেন| নিজের মুখে আপনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আপনার অসীম ক্ষমতার বলে আজ তাকে সত্য করেছেন| 25 এখন প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এবার আপনি আমার পিতা দায়ূদকে দেওয়া অন্য প্রতিশ্রুতিগুলোও পূরণ করুন| আপনি বলেছিলেন, ‘দায়ূদ, তোমারই মতো য়েন তোমার ছেলেরাও সদাসতর্ক ভাবে আমাকে অনুসরণ করে, আর তা যদি করে তাহলে সব সময়ই তোমারই বংশের কেউ না কেউ ইস্রায়েলে রাজত্ব করবে|’ 26 আবার প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি আপনাকে আমার পিতাকে দেওয়া এই প্রতিশ্রুতি অনুগ্রহ করে পালন করতে বলছি| 27 “কিন্তু হে প্রভু, আপনি কি সত্যিই আমাদের সঙ্গে এই পৃথিবীতে বাস করবেন? ঐ বিশাল আকাশ আর স্বর্গের উচ্চতম স্থান, এমন কি স্বর্গের শিখর স্থান আপনাকে ধরে রাখতে পারে না| স্বভাবতঃই আমার বানানো এই মন্দিরও আপনার পক্ষে য়থেষ্ট নয়| 28 কিন্তু দয়া করে আপনি আমার প্রার্থনা ও মিনতি মনে রাখবেন| আমি আপনার দাস, আর আপনি আমার প্রভু ঈশ্বর| আজ আমি আপনার কাছে য়ে প্রার্থনা করলাম তা আপনি স্মরণে রাখবেন| 29 অতীতে আপনিই বলেছিলেন, ‘আমি ওখানে সম্মানিত হবো|’ আপনি দিবারাত্র এই মন্দিরের প্রতি আপনার কৃপাদৃষ্টি রাখবেন| এই মন্দিরে দাঁড়িয়ে আমি আপনার উদ্দেশ্যে য়ে প্রার্থনা করব তা য়েন আপনার কানে পৌঁছায| 30 প্রভু আমি ও আপনার ইস্রায়েলের অনুচররা এখানে এসে আপনার কাছে যা প্রার্থনা করবো তার প্রতি আপনি সজাগ থাকবেন| আমরা জানি স্বর্গেই আপনার বাস| আমাদের বিনতি সেখান থেকে আপনি আমাদের প্রার্থনা শুনে আমাদের ক্ষমা করবেন| 31 “কোন ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তির প্রতি অন্যায আচরণ করে তাহলে তাকে এই বেদীতে নিয়ে আসা হবে| যদি সে সত্যিই অপরাধী না হয় তাহলে তাকে শপথ করে বলতে হবে য়ে সে নির্দোষ| 32 আপনি স্বর্গ থেকে সেকথা শুনে তার যথায়থ বিচার করবেন| যদি সে ব্যক্তি অপরাধী হয় তবে আমাদের তার প্রমাণ দেবেন| যদি সে ব্যক্তি নির্দোষ হয় তাহলে তার প্রমাণও দেবেন| 33 “হয়তো কখনও কখনও আপনার ইস্রায়েলের ভক্তরা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করবে, শত্রুরা তাদের পরাজিত করবে| তখন তারা আপনার কাছেই ফিরে এসে এই মন্দিরে আপনার প্রশংসা করবে এবং আপনার সাহায্য চেয়ে আপনার কাছে প্রার্থনা করবে| 34 আপনি অনুগ্রহ করে স্বর্গ থেকে সেই প্রার্থনা শুনে আপনার ইস্রায়েলের ভক্তদের অপরাধ মার্জনা করে, তাদের হৃত বাসভূমিতে তাদের ফিরিযে আনবেন| এই ভূমি আপনিই তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন| 35 “যদি তারা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচার করে, আপনি তাদের জমিতে খরা আনবেন| তাহলে তারা এখানে এসে আপনার কাছে প্রার্থনা করবে এবং আপনার প্রশংসা করবে| আপনি তাদের কষ্ট দেবেন আর তারা তাদের পাপ থেকে সরে আসবে| 36 তখন আপনি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনায সাড়া দেবেন আর আমাদের পাপ ক্ষমা করবেন| মানুষকে সত্ পথে চলার শিক্ষা দিয়ে হে প্রভু, আবার আপনি তাদের রুক্ষ জমি বৃষ্টিতে ভিজিযে দেবেন| 37 “হয়তো এই জমি এতোই শুকিয়ে যাবে য়ে এখানে আর কোন ফসল জন্মাবে না| অথবা হয়তো লোকরা কোন মহামারীর দ্বারা আক্রান্ত হবে, অথবা হয়তো সমস্ত শস্য কীট পতঙ্গের দ্বারা ধ্বংস হবে, কিংবা আপনার ভক্তরা তাদের বাসস্থানে শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হবে, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়বে| 38 কখনও যদি এরকম কিছু ঘটে আর তখন যদি অন্তত একজনও তার পাপের কথা স্মরণ করে অনুতপ্ত চিত্তে এই মন্দিরের দিকে দুহাত বাড়িযে প্রার্থনা করে, 39 তাহলে আপনি আপনার স্বর্গের বাসভূমি থেকে তার সেই ডাকে সাড়া দেবেন| সমস্ত লোককে ক্ষমা করে তাদের সাহায্য করবেন| এক মাত্র আপনিই অন্তর্য়ামী তাই প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে নিরপেক্ষ ভাবে আপনি বিচার করেন, 40 যাতে যত দিন তারা এখানে তাদের পূর্বপুরুষদের, আপনার দেওয়া এই ভূখণ্ডে বাস করে তত দিন আপনাকে ভয ও ভক্তি করে চলে| 41 দূর দূরান্তরের লোক আপনার মহিমা ও ক্ষমতার কথা জানতে পেরে এখানে এই মন্দিরে এসে প্রার্থনা করবে| 42 43 আপনি আপনার স্বর্গের বাসভূমি থেকে তাদের প্রার্থনায সাড়া দিয়ে, তাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবেন| তাহলে এই সব ব্যক্তিরা আপনার ইস্রায়েলের লোকদের মতোই আপনাকে ভয ও ভক্তি করবে| আর সকলে সব জায়গায় জানবে আপনার প্রতি সম্মান প্রকাশ করে আমি এই মন্দির বানিয়ে ছিলাম| 44 “কখনও কখনও আপনাকে আপনার অনুচরদের শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিতে হবে| তখন আপনার লোকরা আপনার মনোনীত করা এই স্থানে আমার বানানো শহরে আসবে এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করবে| 45 স্বর্গ থেকে আপনি তাদেরও প্রার্থনায সাড়া দিয়ে তাদের সাহায্য করবেন| 46 আপনার লোকরা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করবে| একথা আমি জানি কারণ মানুষ মাত্রেই পাপ করে| আর আপনি তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের শত্রুদের হাতে পরাজিত হতে দেবেন| শত্রুরা তাদের বন্দী করে কোনো দূর দেশে নিয়ে যাবে| 47 সেই দূরের দেশে বসে আপনার লোকরা কি হয়েছে ভেবে তাদের পাপ কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আবার আপনারই কাছে প্রার্থনা করে বলবে, ‘আমরা পাপ করেছি| আমরা ভুল করেছি|’ 48 সেই দূর দেশে থেকেও তারা এই দেশের দিকে ঘুরে দাঁড়াবে| য়ে দেশটি আপনি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন এবং এই শহর য়েটি আপনার মনোনীত এবং এই মন্দির য়েটি আপনার সম্মানে আমি নির্মাণ করেছি, সেটির দিকে ঘুরে দাঁড়াবে এবং তারা আপনার কাছে প্রার্থনা করবে| 49 তাহলে স্বর্গ থেকে আপনি তাদের ডাকে সাড়া দেবেন| 50 আপনার লোকদের তাদের পাপ থেকে মুক্তি দেবেন এবং আপনার প্রতি তাদের পাপাচরণকে ক্ষমা করবেন| তাদের শত্রুদের তখন তাদের প্রতি নরম মনোভাব করে তুলবেন| 51 মনে রাখবেন, ওরা আপনারই ভক্ত| আপনিই ওদের মিশর থেকে, গরমচুল্লী থেকে বের করার মতো করে বাঁচিয়েছিলেন| 52 “প্রভু ঈশ্বর, দয়া করে যখনই আমি এবং আপনার ইস্রায়েলের লোকরা আপনার কাছে প্রার্থনা করবো, তখনই সেই প্রার্থনায সাড়া দেবেন| 53 পৃথিবীর সমস্ত লোকদের মধ্যে থেকে তাদের আপনি নিজে আপনার একান্ত ভক্ত হিসেবে বেছে নিয়েছেন| প্রভু, মোশির মাধ্যমে আমাদের মিশর থেকে বের করে আনার সময় আপনি পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে আমাদের জন্যও আপনি ওরকম করবেন|” 54 শলোমন বেদীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে দুহাত আকাশে তুলে ঈশ্বরের কাছে এই সুদীর্ঘ প্রার্থনা করবেন| প্রার্থনা শেষ হলে তিনি উঠে দাঁড়ালেন| 55 তারপর উচ্চ স্বরে ঈশ্বরকে ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষকে আশীর্বাদ করতে বললেন| শলোমন বললেন: 56 “প্রভুর প্রশংসা করো! তিনি তাঁর লোকদের, ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের বিশ্রাম দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কথা মতো তিনি আমাদের বিশ্রাম দিয়েছেন| প্রভু তাঁর অনুগত দাস মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের য়েসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সব কটিই তিনি পূর্ণ করেছেন| 57 আমি প্রার্থনা করি, প্রভু, আমাদের ঈশ্বর য়ে ভাবে আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন, ঠিক সে ভাবেই য়েন তিনি আমাদেরও পাশে থাকেন, কখনও আমাদের পরিত্যাগ না করেন| 58 আমি প্রার্থনা করছি য়ে আমরা সকলে তাঁকেই অনুসরণ করব| তাঁর বিধি নির্দেশ ও আদেশগুলি মেনে চলবো| য়েগুলো তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন| 59 আমি আশা করছি আমাদের প্রভু ঈশ্বর সর্বদা এই প্রার্থনার কথা এবং আমার অনুরোধ মনে রাখবেন| আমি প্রার্থনা করছি, প্রভু য়েন প্রতিদিন রাজা, তাঁর ভৃত্য ও তাঁর সমস্ত ইস্রায়েলবাসীদের জন্য এগুলো করেন| 60 প্রভু যদি তা করেন তাহলে সমস্ত পৃথিবীবাসী জানতে পারবে য়ে প্রভুই একমাত্র সত্য ঈশ্বর| 61 তোমরা সকলে আমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রতি অনুগত এবং সত্যবদ্ধ থাকবে এবং তাঁর বিধি ও আদেশগুলি এখনকার মতোই ভবিষ্যতেও মেনে চলবে|” 62 তারপর রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকরা এক সঙ্গে প্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করলেন| 63 সেদিন শলোমন মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে 22,000 গবাদি পশু ও 1,20,000 মেষ বলি দিয়েছিলেন| এভাবে রাজা ও ইস্রায়েলের লোকরা মিলে প্রভুর মন্দির উত্সর্গ করেছিল| 64 এছাড়া রাজা শলোমন হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং বলিপ্রদত্ত পশুর চর্বি নৈবেদ্য দিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণটি উত্সর্গ করলেন| তিনি এরকম করলেন কারণ প্রভুর পিতলের বেদীটি খুব বেশী বড় ছিল না য়ে এত সব নৈবেদ্য ধারণ করতে পারে| 65 সেদিন মন্দিরে থেকে রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকরা এই ভাবে ছুটিউদযাপন করেছিল| উত্তরে হমাতের প্রবেশ দ্বার থেকে দক্ষিণে মিশর পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দাই সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিল| তারা সাতদিন ধরে পানাহার, উত্সব ও স্ফূর্তির মধ্যে দিয়ে প্রভুর সঙ্গে সময় কাটাল| তারপর আরো সাতদিন সেখানে থাকল| অর্থাত্ একটানা 14 দিন ধরে তারা উত্সব করল| 66 পরের দিন শলোমন সকলকে বাড়ীতে ফিরে য়েতে বললেন| তারা সকলে রাজাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর কাছ থেকে বিদায নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল| তারা সকলেই প্রভু তাঁর দাস ও ইস্রায়েলের লোকদের জন্য য়েসব ভাল কাজ করেছিলেন সেই সব ভেবে খুবই উত্ফুল্ল ছিল
1 শলোমন প্রভুর মন্দির ও তাঁর রাজপ্রাসাদ বানানোর কাজ শেষ করলেন| তিনি যা যা বানাতে চেয়েছিলেন সবই বানিয়েছিলেন| 2 এরপর প্রভু আবার শলোমনকে দেখা দিলেন, য়ে ভাবে তিনি গিবিয়োনে তাঁকে স্বপ্নদর্শন দিয়েছিলেন সে ভাবে| 3 প্রভু তাঁকে বললেন, “তোমার প্রার্থনা এবং তুমি যা যা আমার কাছে চেয়েছ সে সবই আমি শুনেছি| তুমি এই মন্দির বানিয়েছ এবং আমি এটিকে একটা পবিত্র স্থানে পরিণত করেছি যাতে আমি এখানে সর্বদাই পূজিত হই| আমি সব সময়ই এখানে দৃষ্টি রাখব এবং এখানকার কথা মনে রাখবো| 4 তোমার পিতা দায়ূদ য়ে ভাবে আমার সেবা করেছিলেন, তোমাকেও সে ভাবেই আমার সেবা করতে হবে| দায়ূদ ছিলেন সত্ ও পরিশ্রমী| তুমি অবশ্যই আমার বিধিগুলি এবং আর যা যা আমি তোমায় আদেশ দেব মেনে চলবে| 5 “আর তা যদি তুমি করো আমি অবশ্যই খেযাল রাখবো যাতে ইস্রায়েলের রাজ সিংহাসনে সদাসর্বদা তোমারই পরিবারের কেউ আসীন হয়| তোমার পিতা রাজা দায়ূদকেও আমি এই একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম| আমি বলেছিলাম ইস্রায়েল সর্বদা তারই কোনো না কোনো উত্তরপুরুষ দ্বারা শাসিত হবে| 6 “কিন্তু যদি কখনও তুমি ও তোমার সন্তান, সন্ততিরা আমাকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দাও, আমার দেওয়া বিধি আদেশগুলি পালন না করো এবং অন্য কোনো মূর্ত্তির পূজা করো, তাহলে আমি আমার দেওয়া এই ভূমি ত্যাগ করতে তাদের বাধ্য করব এবং আমি এই পবিত্র মন্দির যেখানে আমার উপাসনা হয়, তা ধ্বংস করব| তখন ইস্রায়েলের ঘটনা সবার কাছে খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, সকলে ইস্রায়েলকে নিয়ে পরিহাস করবে| 7 8 এই মন্দির ধ্বংস হবে| য়ে দেখবে সেই অত্যাশ্চর্য়্য় হবে এবং শিস্ দিয়ে হৈচৈ করবে| তখন য়ে এই মন্দির দেখবে প্রশ্ন করবে, ‘প্রভু কেন এই মন্দির ও এই ভূখণ্ডের লোকদের প্রতি এমন সাংঘাতিক কাণ্ড করলেন|’ 9 অন্যরা তাদের উত্তর দিয়ে বলবে, ‘এরা তাদের প্রভুকে ত্যাগ করেছিল বলেই এই ঘটনা ঘটেছে| প্রভু তাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে আসা সত্ত্বেও তারা তাঁকে উপাসনা করেনি এবং অন্য মূর্ত্তির সেবা করেছিল, তাই প্রভু ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের জীবনে দুর্য়োগ ঘনিয়ে তুলেছেন|”‘ 10 প্রভুর মন্দির ও নিজের রাজপ্রাসাদ নির্মাণের কাজ শেষ করতে রাজা শলোমনের 20 বছর লেগেছিল| 11 তারপর তিনি সোরের রাজা হীরমকে গালীল প্রদেশের 20টি শহর উপহার দিয়েছিলেন| কারণ রাজা হীরম, শলোমনকে এরস গাছ ও দেবদারু গাছের কাঠ প্রয়োজন মতো সোনা দিয়ে প্রভুর মন্দির বানানোর কাজে সাহায্য করেছিলেন| 12 হীরম তখন সোর থেকে শলোমনের দেওয়া শহরগুলো দেখতে এলেন| কিন্তু এই শহরগুলো দেখে তিনি মোটেই খুশী হলেন না| 13 তিনি শলোমনকে বললেন, “ভাই আমার, এ শহরসমূহ কি এমন য়ে তুমি আমাকে উপহার দিলে?” হীরম এই সব ভূখণ্ডের নাম কাবুল দিয়েছিলেন এবং আজ পর্য়ন্ত ঐ অঞ্চল কাবুল নামেই পরিচিত| 14 হীরম রাজা শলোমনকে মন্দির তৈরীর কাজে ব্যবহারের জন্য প্রায় 9,000 পাউণ্ড সোনা পাঠিয়েছিলেন| 15 মন্দির এবং প্রাসাদ নির্মাণের সময় রাজা শলোমন ক্রীতদাসদের কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন| রাজা শলোমন মিল্লো, জেরুশালেম শহরের দেওয়াল নির্মাণ করেছিলেন এবং তারপর হাত্সোর, মগিদ্দো ও গেষর নামে শহরগুলি বানিয়ে ছিলেন| 16 অতীতে মিশরের রাজা গেষরে কনানীযদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের হত্যা করে শহরটি বালিয়ে দিয়েছিলেন| মিশরের ফরৌণের মেয়েকে বিয়ে করার সময়, ফরৌণ শলোমনকে গেষর শহরটি য়ৌতুক দেন| 17 শলোমন সেই শহরটাকে আবার নতুন করে গড়ে তুললেন| এছাড়াও শলোমন নিম্ন বৈত্-হোরোণ, 18 বালত্ ও তামর মরু শহর দুটি বানিয়ে ছিলেন| 19 শস্য ও অন্যান্য সামগ্রী সুরক্ষিত রাখার জন্যও শলোমন কয়েকটি নগ়র নির্মাণ করেন| নিজের রথ ও ঘোড়া রাখার জায়গাও তিনি বানিয়েছিলেন| জেরুশালেম, লিবানোন ও অন্যান্য য়ে সব জায়গা শলোমন শাসন করেছিলেন সেই সব জায়গায় তিনি যা যা বানাতে চেয়েছিলেন তা বানিয়ে ছিলেন| 20 দেশে ইস্রায়েলীয় ছাড়াও ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয় প্রভৃতি অনেক বাসিন্দা বাস করত| 21 ইস্রায়েলীয়রা তাদের বিনষ্ট করতে পারে নি| কিন্তু শলোমন তাদের ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করান| তারা এখনও ক্রীতদাস হিসেবেই আছে| 22 তবে রাজা শলোমন কখনও কোন ইস্রায়েলীয়কে তাঁর দাসত্ব করতে দেন নি| ইস্রায়েলীয়রা সৈনিক, সেনাপতি, সেনাধিনায়ক, আধিকারিক, সারথী বা রথ পরিচালক হিসেবে কাজ করতো| 23 শলোমনের বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য সব মিলিয়ে 550 পরিদর্শক ছিল, তারা অন্যান্য যারা কাজ করত তাদের তত্ত্বাবধান করত| 24 ফরৌণের কন্যা দায়ূদ শহর থেকে শলোমন তাঁর জন্য য়ে বড় বাড়িটি বানিয়ে ছিলেন সেখানে চলে আসার পর শলোমন মিল্লো বানান| 25 প্রতি বছর তিন বার করে শলোমন তাঁর বানানো প্রভুর মন্দিরের বেদীতে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করতেন| এছাড়াও তিনি মন্দিরে ধূপধূনো দেবার ব্যবস্থা করেন ও মন্দিরের যা কিছু নিয়মিত প্রয়োজন তা য়োগাতেন| 26 রাজা শলোমন ইদোম দেশে সূফ সাগরের তীরে এলাতের কাছে ইত্সিযোন গেবরে কিছু জাহাজ বানিয়েছিলেন| 27 রাজা হীরমের রাজ্যে কিছু নাবিক ছিলেন, যারা সমুদ্রের সব খবরাখবর রাখত| তিনি এই সব নাবিকদের শলোমনের নৌবাহিনীতে য়োগ দিয়ে, তাঁর লোকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য পাঠিয়েছিলেন| 28 শলোমন তাঁর জাহাজ ওফীরে পাঠানোর পর তারা সেখান থেকে শলোমনের জন্য 31500 পাউণ্ড সোনা এনেছিল|
1 শিবার রাণী লোকমুখে শলোমনের খ্যাতি ও প্রজ্ঞার কথা শুনতে পেয়ে তাঁকে কঠিন প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা করতে এলেন| 2 তিনি বহু দাস দাসীদের নিয়ে জেরুশালেমে উপস্থিত হলেন| তিনি অজস্র উটে করে নানাধরণের মশলাপাতি, অলঙ্কার ও সোনা নিয়ে এলেন এবং শলোমনের সঙ্গে দেখা করলেন| তারপর শলোমনকে সম্ভাব্য বহুবিধ কঠিন প্রশ্ন করলেন| 3 শলোমনের কাছে সেই সব প্রশ্ন খুব একটা কঠিন ছিল না| তিনি তার সব প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন| 4 তখন শিবার রাণী উপলব্ধি করলেন য়ে সত্যিই শলোমন খুবই জ্ঞানী| 5 তিনি তাঁর সুন্দর রাজপ্রাসাদটিও দেখলেন, তাঁর ভোজসভার বিলাসবহুল আয়োজন, সেনাপতিদের বৈঠক, প্রাসাদের ভৃত্য ও তাদের বহুমূল্য পোশাক, মন্দিরের অনুষ্ঠান ও বলিদানের রকম সকম দেখে বিস্মযে বাকরহিত হয়ে গেলেন| 6 তিনি তখন রাজা শলোমনকে বললেন, “আমি আমার নিজের দেশে বসে আপনার বুদ্ধিমত্তা ও কীর্তিকলাপের বহু খ্যাতি শুনেছিলাম| এখন দেখছি তার এক কণাও মিথ্যা নয়| 7 আমি নিজের চোখে না দেখা পর্য়ন্ত এসব কথা বিশ্বাস করি নি কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি, লোক-মুখে যা শুনেছিলাম আপনার বুদ্ধিমত্তা ও সম্পদ তার চেয়েও অনেক বেশী| 8 সত্যিই আপনার লোকরা ও ভৃত্যরা খুবই ভাগ্যবান কারণ তারা প্রতিদিন আপনার সেবা করতে পায ও আপনার সান্নিধ্যে থেকে আপনার জ্ঞানগর্ভ কথা শুনতে পায| 9 প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে প্রশংসা করুন| তিনি নিশ্চয়ই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট, তাই আপনাকে ইস্রায়েলের রাজপদে অধিষ্ঠিত করেছেন| প্রভু ঈশ্বর ইস্রায়েলকে ভালোবাসেন বলেই আপনাকে এদেশের রাজা করেছেন| আপনি বিধি মেনে নিরপেক্ষ ভাবে প্রজাদের শাসন করেন|” 10 এরপর শিবার রাণী রাজা শলোমনকে প্রায় 9,000 পাউণ্ড সোনা, বহু মশলাপাতি ও অলঙ্কার উপহার দিলেন| তিনি রাজাকে য়ে পরিমাণ মশলাপাতি দিয়েছিলেন তার পরিমাণ এতদিন পর্য়ন্ত ইস্রায়েলে য়ে মশলাপাতি প্রবেশ করেছিল তার চেয়েও বেশী| 11 এদিকে হীরমের নৌবহর ওফীর থেকে সোনা ছাড়াও বহু পরিমাণ কাঠ ও অলঙ্কার নিয়ে এসেছিল| 12 শলোমন সেই সব কাঠ দিয়ে রাজপ্রাসাদ ও মন্দিরের ঠেকা দেওয়া ছাড়াও মন্দিরের গায়কদের জন্য বীণা ও বাদ্যযন্ত্র বানিয়ে দিয়েছিলেন| তখনও পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের কোনো লোকই সেই ধরণের কাঠ চোখে দেখেনি এবং সেই সময়ের পরও আর কেউ সে ধরণের কাঠ দেখেনি| 13 প্রথামতো রাজা শলোমন এক শাসক হিসেবে আরেক শাসক শিবার রাণীকে বহু উপহার দিলেন| এছাড়াও তিনি শিবার রাণীকে তিনি যা যা চেয়েছিলেন সবই দিয়েছিলেন| এরপর শিবার রাণী ও তাঁর দাসদাসীরা নিজের দেশে ফিরে গেলেন| 14 প্রতি বছর রাজা শলোমন প্রায় 79,920 পাউণ্ড সোনা পেতেন| 15 এছাড়াও তিনি তাঁর নৌ-বহরের ব্যবসাযী ও বণিকদের কাছ থেকে আরবের শাসক ও প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের কাছে থেকে বহু পরিমাণে সোনা পেতেন| 16 রাজা শলোমন পেটানো সোনা দিয়ে 200টি বড় ঢাল বানিয়েছিলেন| প্রতি ঢালে প্রায় 15 পাউণ্ড করে সোনা ছিল| 17 তিনি পেটানো সোনা দিয়ে আরো 300টি ঢাল বানিয়েছিলেন; তার প্রত্যেক ঢালে 4 পাউণ্ড করে সোনা ছিল| এই ঢালগুলোকে তিনি “লিবানোনের জঙ্গল” নামের বাড়ীতে রেখেছিলেন| 18 রাজা শলোমন খাঁটি সোনায় মোড়া হাতির দাঁতের একটা বিশাল সিংহাসন বানিয়েছিলেন| 19 সেই সিংহাসনটায় দুটো ধাপ বেয়ে উঠতে হতো| সিংহাসনের পেছনের দিকটা ওপরে গোলাকার ছিল| বসার জায়গার দুধারেই ছিল হাতল লাগানো| আর দুদিকের হাতলের তলায় আঁকা ছিল সিংহের ছবি| 20 ওঠার সিঁড়ির ছটি ধাপের প্রত্যেকটার শেষেও একটা করে সিংহের মূর্ত্তি ছিল| আর কোনো দেশেই এধরণের রাজসিংহাসন ছিল না| 21 রাজা শলোমনের ব্যবহার্য় সমস্ত পেয়ালা ও গ্লাস ছিল সোনায় বানানো| “লিবানোনের জঙ্গল” বাড়ির সমস্ত পাত্রও ছিল খাঁটি সোনার| রাজপ্রাসাদের কোন কিছুই রূপোর ছিল না| শলোমনের সময়ে চতুর্দিকে এতো বেশী সোনা ছিল য়ে লোকরা রূপোকে কোনো মূল্যবান ধাতু বলে মনেই করত না| 22 অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য রাজা শলোমনের বাণিজ্য তরী ছিল| এগুলো আসলে ছিল হীরমেরই জাহাজ| তিন বছর অন্তর এই সমস্ত জাহাজ সোনা, রূপা, হাতির দাঁত ও পশু পাখিতে ভর্তি হয়ে ফিরে আসত| 23 শলোমন ছিলেন পৃথিবীর সব চেয়ে বড় রাজা| তিনি ছিলেন সব চেয়ে বেশী ধনী ও পণ্ডিত| 24 সব জায়গার লোকরাই শলোমনের দর্শন পেতে চাইতো, তারা শলোমনের ঈশ্বর প্রদত্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয পেতে চাইতো এবং তাঁর কথা শুনতে চাইতো| 25 প্রতি বছর দূর দূরান্তের দেশ থেকে বহু লোক সোনা এবং রূপোর জিনিসপত্র, পোশাক পরিচ্ছদ, অস্ত্রশস্ত্র মশলাপাতি, ঘোড়া এবং খচ্চর উপহার নিয়ে রাজা শলোমনের সঙ্গে দেখা করতে আসতো| 26 সে জন্য শলোমনের অনেক রথ ও ঘোড়া ছিল| তাঁর কাছে 1400 রথ ও 12000 ঘোড়া ছিল| আলাদা শহর বানিয়ে সেই সব শহরে এই রথগুলো রাখা থাকত আর জেরুশালেমে তাঁর নিজের কাছে শলোমন অল্প কিছু রথ রেখে দিয়েছিলেন| 27 ইস্রায়েলকে তিনি সম্পদে ও ঐশ্বর্য়ে ভরে দিয়েছিলেন| জেরুশালেম শহরে রূপো ছিল পাথরের মতোই সাধারণ| এরস গাছও ছিল পাহাড়ি গাছগাছালির মতো সহজলভ্য়| 28 শলোমন মিশর ও কূ থেকে ঘোড়া এনেছিলেন| তাঁর বণিকরা কূ থেকে কিনে এই সমস্ত ঘোড়া ইস্রায়েলে নিয়ে আসতো| 29 মিশর থেকে আনা একটা রথের দাম পড়ত 15 পাউণ্ড রূপোর সমান| আর ঘোড়ার দাম পড়ত 3-3/4 পাউণ্ড রূপোর সমান| শলোমন হিত্তীয় ও অরামীয় রাজাদের কাছে ঘোড়া ও রথ বিক্রি করতেন|
1 রাজা শলোমন নারীদের সান্নিধ্য পছন্দ করতেন| তিনি এমন অনেক মহিলাকে ভালোবেসে ছিলেন যারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা নয়| মিশরের ফরৌণের কন্যা ছাড়াও শলোমন হিত্তীয়, মোয়াবীয়া, অম্মোনীয়া, ইদোমীয়া, সীদোনীযা প্রভৃতি অনেক বিজাতীয রমণীকে ভালোবাসতেন| 2 অতীতে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, “তোমরা অন্য দেশের লোকদের বিয়ে করবে না, কারণ তাহলে ওরা তাদের মূর্ত্তিকে পূজা করতে তোমাদের প্রভাবিত করবে|” কিন্তু তা সত্ত্বেও শলোমন বিজাতীয রমনীদের প্রেমে পড়েন| 3 শলোমনের 700 জন স্ত্রী ছিল| (যারা সকলেই অন্যান্য দেশের নেতাদের কন্যা|) এছাড়াও তাঁর 300 জন ক্রীতদাসী উপপত্নী ছিল| শলোমনের পত্নীরা তাঁকে ঈশ্বর বিমুখ করে তুলেছিল| 4 শলোমনের তখন বয়স হয়েছিল, স্ত্রীদের পাল্লায় পড়ে তিনি অন্যান্য মূর্ত্তির পূজা করতে শুরু করেন| তাঁর পিতা রাজা দায়ূদের মতো একনিষ্ঠ ভাবে শলোমন শেষ পর্য়ন্ত প্রভুকে অনুসরণ করেন নি| 5 শলোমন সীদোনীয় দেবী অষ্টোরত এবং অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য পাষাণ মূর্ত্তি মিল্কমের অনুগত হন| 6 অতএব শলোমন প্রভুর সামনে ভুল কাজ করলেন| তিনি পুরোপুরি প্রভুর শরণাগত হননি য়ে ভাবে তাঁর পিতা দায়ূদ হয়েছিলেন| 7 এমনকি তিনি মোয়াবীয়দের ঘৃণ্য মূর্ত্তি কমোশের আরাধনার জন্য জেরুশালেমের পাশেই পাহাড়ে একটা জায়গা বানিয়ে দিয়েছিলেন| ঐ একই পাহাড়ে তিনি ঐ ভযংকর মূর্ত্তির আরাধনার জন্যও একটি জায়গা বানিয়ে ছিলেন| 8 এই ভাবে রাজা শলোমন তাঁর প্রত্যেকটি ভিন্দেশী স্ত্রীর আরাধ্য মূর্ত্তির জন্য একটি করে পূজোর জায়গা করে দেন, আর তাঁর স্ত্রীরা ধূপধূনো দিয়ে সেই সব জায়গায় তাদের মূর্ত্তিসমূহের কাছে বলিদান করত| 9 এই ভাবে রাজা শলোমন প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের, কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন| সুতরাং প্রভু শলোমনের প্রতি খুব ক্রুদ্ধ হলেন| তিনি দুবার শলোমনকে দেখা দিয়ে, 10 তাঁকে অন্য মূর্ত্তির পূজা করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও শলোমন সেই নিষেধ মানেন নি| 11 তখন প্রভু শলোমনকে বললেন, “শলোমন, তুমি চুক্তি ভঙ্গ করেছ| তুমি আমার আদেশ মেনে চলো নি| আমিও কথা দিলাম তোমার রাজত্ব তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব এবং আমি তা তোমার কোন একটি ভৃত্যের হাতে তুলে দেব| কিন্তু য়েহেতু আমি তোমার পিতা দায়ূদকে ভালোবাসতাম আমি তোমার জীবদ্দশায় তোমার রাজ্য তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব না| তোমার সন্তান রাজা না হওয়া পর্য়ন্ত আমি অপেক্ষা করব| আর তারপর আমি তার কাছ থেকে এই রাজত্ব কেড়ে নেব| 12 13 তবে আমি তার কাছে থেকে গোটা রাজত্ব কেড়ে নেব না, তার শাসন করার জন্য একটি পরিবারগোষ্ঠী রেখে দেব| দায়ূদের কথা ও জেরুশালেমের কথা ভেবেই আমি এই অনুগ্রহ করব| কারণ দায়ূদ আমার পরম অনুগত সেবক ছিল| আর তাছাড়া এই জেরুশালেম শহরকে আমি নিজেই বেছে নিয়েছিলাম| 14 সে সময় প্রভু ইদোমীয় হদদকে শলোমনের শত্রু করে তুললেন| হদদ ছিলো ইদোমের রাজপরিবারের সন্তান| 15 এক সময় দায়ূদ ইদোমকে পরাজিত করেছিলেন| তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধান য়োয়াব তখন ইদোমে নিহতদের কবর দিতে যান| সে সময় ইদোমে অবশিষ্ট যারা জীবিত ছিল য়োয়াব তাদেরও হত্যা করেছিলেন| 16 য়োয়াব ও ইস্রায়েলের লোকরা সে সময়ে 6 মাস ইদোমে ছিলেন| এইসময়ে তারা সমস্ত ইদোমীয়দের হত্যা করেন. 17 সে সময়ে হদদ ছিল নেহাতই শিশু| সে মিশরে পালিয়ে যায়| তার পিতার কিছু ভৃত্যও তখন তার সঙ্গে গিয়েছিল| 18 মিদিয়ন পার হয়ে তারা পারণে গিয়ে পৌঁছলে আরো কিছু লোক তাদের সঙ্গে য়োগ দেয়| তারপর এই গোটা দলটি মিশরে গিয়ে ফারৌণের সাহায্য প্রার্থনা করল| ফরৌণ হদদকে একটা বাড়ি ও কিছু জমি ছাড়াও তার খাবার-দাবার দেখাশোনার ব্যবস্থা করেন| 19 ফরৌণ হদদকে খুবই পছন্দ করতেন| তিনি তাঁর শালীর সঙ্গে হদদের বিয়ে দিয়েছিলেন| (রাণী তহপনেষ ফরৌণের স্ত্রী ছিলেন|) 20 ফরৌণের স্ত্রী তহপনেষের বোনকে হদদ বিয়ে করার পর গনুবত্ নামে তার একটি পুত্র হয়| রাণী তহপনেষ গনুবত্কে ফরৌণের প্রাসাদে তাঁর নিজের সন্তানদের সঙ্গে মানুষ হতে দিয়েছিলেন| 21 এদিকে মিশরে থাকাকালীন হদদ দায়ূদের মৃত্যু সংবাদ পেল| সেনাপতি য়োয়াবের মৃত্যুর খবরও তার কানে পৌঁছাল| তখন হদদ ফরৌণকে বলল, “আমাকে আমার নিজের দেশের বাড়িতে ফিরে য়েতে দিন| 22 কিন্তু ফরৌণ তার উত্তরে বললেন, “আমি তোমাকে এখানে তোমার যা কিছু প্রয়োজন তা দিয়েছি| তবু কেন তুমি তোমার নিজের দেশে ফিরে য়েতে চাইছ?হদদ মিনতি করে বলল, “দয়া করে আমায় বাড়িতে ফিরতে দিন| 23 ইলিয়াদার পুত্র রষোণকেও ঈশ্বর শলোমনের শত্রু করে তুলেছিলেন| রষোণ তার মনিব সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিল| 24 দায়ূদ সোবার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে হারানোর পর রষোণ কিছু লোকদের জোগাড় করে একটা ছোট সেনাবাহিনীর প্রধান হয়ে বসেন| এরপর রষোণ দম্মেশকে গিয়ে সেখানকার রাজা হন| 25 রষোণ অরামে রাজত্ব করতেন ও ইস্রায়েলের প্রতি তাঁর তীব্র বিদ্বেষ ছিল| যে কারণে শলোমনের জীবদ্দশায় রষোণ ইস্রায়েলের সঙ্গে শত্রুতা করেছিলেন| রষোণ ও হদদ দুজনেই ইস্রায়েলে নানান ঝামেলা পাকিযেছিলেন| 26 নবাটের পুত্র যারবিয়াম ছিল শলোমনের জনৈক ভৃত্য| সরেদানিবাসী যারবিয়াম ছিল ইফ্রয়িমীয পরিবারগোষ্ঠীর লোক| তার বিধবা মায়ের নাম ছিল সরূযা| এই যারবিয়ামও রাজার বিপক্ষে য়োগ দিয়েছিল| 27 এই হল সেই গল্প, কেন যারবিয়াম রাজার বিরুদ্ধে গেল| শলোমন তখন মিল্লো নির্মাণ করছিলেন এবং দায়ূদ, তাঁর পিতার নামে শহরের দেওয়াল গাঁথছিলেন| 28 যারবিয়াম য়থেষ্ট শক্তসমর্থ ছিল এবং শলোমন দেখলেন, ‘এই তরুণটি একজন সুদক্ষ কর্মী|’ তখন তিনি যারবিয়ামকে য়োষেফ পরিবারগোষ্ঠীর কর্মীদের অধ্যক্ষ করে দিলেন| 29 এক দিন যখন যারবিয়াম জেরুশালেম থেকে বাইরে যাচ্ছিল তখন শীলোনীয ভাববাদী অহিযের সঙ্গে তার পথে দেখা হল| অহিয একটি নতুন জামা পরেছিলেন| 30 সেই জনশূন্য প্রান্তরে অহিয তাঁর নতুন জামাটিকে ছিঁড়ে বারোটি টুকরো করেন| 31 তারপর যারবিয়ামকে বললেন, “জামার 10টি টুকরো তোমার নিজের জন্য নাও| প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমি শলোমনের কাছ থেকে রাজ্য কেড়ে নিয়ে তোমায় 10টি পরিবারগোষ্ঠী দিয়ে দেব| 32 আমি দায়ূদের উত্তরপুরুষদের শুধুমাত্র একটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর শাসন করতে দেব| আমার পরমভক্ত দায়ূদ ও জেরুশালেমের মুখের দিকে তাকিযে আমি এটুকু করব| ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর থেকে আমিই বয়ং জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছিলাম| 33 আমি শলোমনের কাছ থেকে রাজত্ব কেড়ে নেব কারণ শলোমন আমার উপাসনা বন্ধ করেছে| শলোমন সীদোনীয়দের মূর্ত্তি অষ্টোরত, মোয়াবীয়দের মূর্ত্তি কমোশ ও আম্মোনীযদের মিলকমের আরাধনা করছে| শলোমন ভালো ও সঠিক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে| সে আর এখন আমার বিধি ও আদেশ মেনে চলে না| ওর পিতা দায়ূদ য়ে ভাবে জীবনযাপন করেছিল শলোমন আর সে ভাবে জীবনযাপন করে না| 34 একারণেই আমি শলোমনের পরিবারের হাত থেকে রাজ্য কেড়ে নেব| কিন্তু আমার একনিষ্ঠ ভক্ত শলোমনের পিতা দায়ূদের কথা মনে রেখে শলোমনকে তার বাকী জীবনটুকু শাসক থাকতে দেব| 35 তবে তার পুত্রের হাত থেকে আমি অবশ্যই রাজত্ব নিয়ে নেব| আর তারপর তার থেকে দশটি পরিবারগোষ্ঠী যারবিয়াম তোমাকে শাসন করতে দেব| 36 শলোমনের সন্তান একটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর শাসন করবে| কারণ জেরুশালেমে য়ে শহরটি আমার নিজের বলে আমি বেছে নিয়েছিলাম সব সময়ই দায়ূদের কোনো উত্তরপুরুষ তা শাসন করবে| 37 কিন্তু, তা বাদে, আমি তোমায় তোমার চাহিদা মত আর সমস্ত কিছুরই ওপর শাসন করতে দেব| তুমি ইস্রায়েলের উত্তর রাজ্যগুলি শাসন করবে| 38 যদি তুমি সত্ পথে থেকে আমার নির্দেশ মেনে চলো, তাহলেই আমি তোমার জন্য এই সব করব| তুমি যদি দায়ূদের মতো আমার বিধি ও আদেশ মেনে চলো তাহলে আমি তোমার পাশে থাকব এবং তোমার বংশকে রাজবংশে পরিণত করব, য়েমন আমি দায়ূদের জন্য করেছিলাম| ইস্রায়েল আমি তোমার হাতে তুলে দেব| 39 শলোমনের কৃতকার্য়ের জন্যই আমি দায়ূদের বংশধরদের শাস্তি দেব, তবে অবশ্যই তা বরাবরের জন্য নয়|”‘ 40 শলোমন যারবিয়ামকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন| কিন্তু যারবিয়াম তখন মিশরে পালিয়ে গেল এবং শলোমনের মৃত্যু পর্য়ন্ত যারবিয়াম মিশররাজ শীশকের আশ্রয়ে ছিল| 41 শলোমন তার শাসন কালে বহু বড় বড় কাজ করেছিলেন| সে সব কথা ‘শলোমনের ইতিহাস গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ আছে| 42 শলোমন জেরুশালেমের অন্তর্গত ইস্রায়েলে 40 বছর রাজত্ব করেছিলেন| 43 তারপর তিনি যখন মারা গেলেন তাঁকে দায়ূদ শহরে সমাধিস্থ করা হল| এরপর রাজা হলেন শলোমনের পুত্র রহবিয়াম|
1 নবাটের পুত্র যারবিয়াম তখনও মিশরে লুকিয়ে ছিল| যখন সে শলোমনের মৃত্যু সংবাদ পেল, তার জন্মভূমি ইফ্রয়িমে পার্বত্য অঞ্চলের সেরেদতে ফিরে এল|এদিকে রাজা শলোমনের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হলে নতুন রাজা হলেন তার পুত্র রহবিয়াম| 2 3 ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা রহবিয়ামকে রাজপদে অধিষ্ঠিত করতে শিখিমে গিয়েছিল| কারণ রহবিয়াম তখন সেখানেই ছিল| সকলে রহবিয়ামকে বলল, 4 “আপনার পিতা আমাদের খাটিযে খাটিযে জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছিলেন| আপনি দয়া করে আমাদের কাজের বোঝা একটু হাল্কা করে দিলেই আমরা আপনার হয়ে কাজ করব|” 5 রহবিয়াম তাদের উত্তর দিলেন, “তোমরা তিনদিন পরে আমার কাছে এস| তখন আমি আমার সিদ্ধান্ত তোমাদের জানাব|” একথা শুনে সবাই ফিরে গেল| 6 শলোমনের য়ে সমস্ত প্রবীণ পরামর্শদাতা তখনও জীবিত ছিলেন, রাজা রহবিয়াম তাদের তাঁর কর্তব্য কর্ম সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন, “আমার এক্ষেত্রে কি করা উচিত্? আমি এদের কি বলব? 7 প্রবীণরা তাঁকে বললেন, “তুমি যদি আজ ওদের কাছে দাসের মতো হও, ওরা সত্যি তোমার সেবা করবে| তুমি যদি ওদের সঙ্গে দয়াপরবশ হয়ে কথা বলো, তাহলে ওরা চির দিনই তোমার হয়ে কাজ করবে|” 8 কিন্তু রহবিয়াম এই পরামর্শে কর্ণপাত করলো না| তিনি তাঁর বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন| 9 সে তাদের বলল, “লোকরা বলছে, ‘আপনার পিতা যা কাজ দিতেন তার চেয়েও আমাদের হাল্কা কাজ দিন|’ কি করা যায় বলো তো? আমি এখন ওদের কি বলি?” 10 রাজার বন্ধুরা রহবিয়ামকে বলল, “শোন কথা! ওরা নাকি বলছে তোমার পিতা ওদের বেশী খাটাতেন| তুমি কেবল মাত্র ওদের ডেকে বলে দাও, ‘দেখ হে, আমার কড়ে আঙ্গুল আমার পিতার পুরো দেহের চেয়েও শক্তিশালী| 11 আমার পিতার জন্য তোমরা য়ে কাজ করেছ তার চেয়েও অনেক কঠিন কাজ আমি তোমাদের দিয়ে করাব| কাজ আদায করার জন্য আমার পিতা তোমাদের শুধু চাবকাতেন, আমি ধারালো লোহা বসানো চাবুক দিয়ে চাবকাবো|”‘ 12 রহবিয়াম লোকদের তিন দিন পরে আসতে বলেছিলেন তাই ঠিক তিন দিন পরে ইস্রায়েলের লোকরা আবার রহবিয়ামের কাছে ফিরে এল| 13 রহবিয়াম তখন প্রবীণদের কথা না শুনে 14 তার বন্ধু-বান্ধবদের পরামর্শ অনুযায়ীবললেন, “আমার পিতা তোমাদের জোর করে বেশি খাটিযেছিল বলছো, এখন আমি আরো বেশী খাটাবো| আমার পিতা তোমাদের শুধু চাবকেছেন, আমি লোহা বসানো চাবুক দিয়ে চাবকাবো|” 15 অর্থাত্ রাজা লোকদের আবেদনে সাড়া দিলেন না| প্রভুর অভিপ্রায়েই এই ঘটনা ঘটল| প্রভু নবাটের পুত্র যারবিয়ামের কাছে তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখার জন্যই এই ঘটনা ঘটালেন| শীলোনীয ভাববাদী অহিযের মাধ্যমে প্রভু যারবিয়ামের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলেন| 16 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক দেখল নতুন রাজা তাদের আবেদনে কর্ণপাত পর্য়ন্ত করল না| তখন তারা রাজাকে এসে বলল, “আমরা কি দায়ূদের পরিবারভুক্ত? মোটেই না| আমরা কি য়িশযের জমির কোনো ভাগ পাই ? না! তাহলে দেশবাসীরা চলো আমরা আমাদের নিজের বাড়িতে ফিরে যাই| দায়ূদের পুত্র তার নিজের লোকদের ওপর রাজত্ব করুক|” একথা বলে ইস্রায়েলের লোকরা য়ে যার বাড়িতে ফিরে গেল| 17 ইস্রায়েলের য়ে সমস্ত লোক যিহূদার শহরগুলিতে থাকত রহবিয়াম শুধুমাত্র তাদের ওপর রাজত্ব করেছিলেন| 18 অদোরাম নামে এক জন লোক কর্মচারীদের তত্ত্বাবধান করত| রাজা তাকে ডেকে পাঠিয়ে লোকদের সঙ্গে কথা বলতে বললেন| কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা পাথর ছুঁড়ে তাকে মেরে ফেলল| রহবিয়াম তখন কোন মতে তাঁর রথে চড়ে জেরুশালেমে পালিয়ে গেলেন| 19 অতএব ইস্রায়েলের লোকরা দায়ূদের পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল এবং এখনও পর্য়ন্ত তারা দায়ূদ পরিবার বিরোধী| 20 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক যখন যারবিয়ামের ফিরে আসার কথা জানতে পারল, তারা একটি সমাবেশের আয়োজন করে তার সঙ্গে দেখা করে তাকেই সমগ্র ইস্রায়েলের রাজা হিসেবে ঘোষণা করল| এক মাত্র যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী দায়ূদের পরিবারের অনুসরণ করতে লাগল| 21 রহবিয়াম জেরুশালেমে ফিরে গেল এবং যিহূদা ও বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীকে একত্রে জড়ো করলেন| এই দুই গোষ্ঠী মিলিয়ে মোট 1,80,000 জনের একটি সেনাবাহিনী গঠিত হল| রহবিয়াম ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তার রাজত্ব উদ্ধার করতে চেয়েছিলেন| 22 কিন্তু প্রভু শময়িয় নামে এক ঈশ্বরের লোকের সঙ্গে কথা বললেন| তিনি বললেন, 23 “যাও যিহূদার রাজা শলোমনের পুত্র রহবিয়াম আর যিহূদার লোকরা ও বিন্যামীনকে গিয়ে ভাইযে ভাইযে যুদ্ধ করতে বারণ করো| 24 ওদের সকলকে ঘরে ফিরে য়েতে বলো কারণ আমিই এই সব ঘটিয়েছি|” রহবিয়ামের সেনাবাহিনী প্রভুর আদেশ মেনে বাড়ি চলে গেল| 25 শিখিম হল ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের একটি শহর| যারবিয়াম শিখিমকে সুরক্ষিত ও শক্তিশালী করে সেখানেই বসবাস করতে লাগল| পরে সে পনূযেল নামে একটি শহরে গিয়ে সেটিকে সুরক্ষিত ও শক্তিশালী করেছিলো| 26 যারবিয়াম মনে মনে ভাবলেন, “যদি লোকরা জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরে নিয়মিত যাতাযাত চালিযে য়েতে থাকে তাহলে তারা শেষ পর্য়ন্ত দায়ূদের উত্তরপুরুষদের দ্বারাই শাসিত হতে চাইবে| তারা আবার যিহূদার রাজা রহবিয়ামকে অনুসরণ করবে আর আমাকে হত্যা করবে|” 27 28 তাই রাজা তার পরামর্শদাতাদের কাছে তার করণীয কর্তব্য সম্পর্কে উপদেশ চাইলেন| তাঁরা রাজাকে তাঁদের পরামর্শ দিলেন| তখন যারবিয়াম দুটো সোনার বাছুর বানিয়ে লোকদের বললেন, “তোমরা কেউ আরাধনা করতে জেরুশালেমে যাবে না| ইস্রায়েলের অধিবাসীরা শোনো, এই দেবতারাই তোমাদের মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন|” 29 একথা বলে যারবিয়াম একটা সোনার বাছুর বৈথেলে রাখলেন| অন্য বাছুরটাকে রাখলো দান শহরে| 30 ইস্রায়েলের লোকরা তখন বৈথেলে ও দানে বাছুর দুটোকে আরাধনা করতে গেল| কিন্তু এটি অত্যন্ত গর্হিত ও পাপের কাজ হল| 31 এছাড়াও যারবিয়াম উচ্চ স্থানে মন্দির বানিয়েছিল| শুধুমাত্র লেবীয়দের পরিবারগোষ্ঠী থেকে যাজক বেছে নেওয়ার পরিবর্তে সে ইস্রায়েলের বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠী থেকে যাজকদের বেছে নিয়েছিল| 32 এরপর রাজা যারবিয়াম ইস্রায়েল উত্সবের মতো একটি নতুন ছুটির দিনের প্রবর্তন করল| অষ্টম মাসের 15 দিনে এই ছুটি পালিত হত| এসময় রাজা বৈথেল শহরের বেদীতে বলিদান করত| সে তার বানানো বাছুর দুটোর সামনে বলি দিত| রাজা যারবিয়াম বৈথেলে ও উঁচু জায়গায় তার বানানো পূজোর জায়গাগুলোর জন্য যাজকদের বেছে নিয়েছিল| 33 অর্থাত্ রাজা যারবিয়াম তার সুবিধা মতো ইস্রায়েলীয়দের জন্য উত্সবের সময় বেছে নিয়েছিল| অষ্টম মাসের 15 দিনের মাথায় ঐ ছুটির দিনটিতে বৈথেল শহরে তার বানানো বেদীতে বলিদান ছাড়াও ধূপধূনো দেওয়া হতো|
1 প্রভু যিহূদার ঈশ্বরের প্রেরিত এক জনকে বৈথেলে যাবার জন্য এবং বেদীর ওপরে পূজো করবার বিরুদ্ধে কথা বলবার জন্য ডেকে পাঠালেন| যখন সেই ভাববাদী বৈথেলে পৌঁছলেন তখন রাজা যারবিয়াম বেদীর সামনে দাঁড়িয়ে ধূপধূনো দিচ্ছিলেন|তিনি গিয়ে ঐ য়জ্ঞবেদীকে সম্বোধন করে বললেন, “দায়ূদের পরিবারে য়োশিয নামে এক বালক জন্মাবে| যাজকরা এখন য়জ্ঞবেদীতে পূজো দিচ্ছ, কিন্তু য়োশিয একদিন এই সমস্ত যাজকদের য়জ্ঞবেদীর ওপরেই হত্যা করবে| এখন যাজকরা য়ে বেদীতে ধূপধূনো জ্বালাচ্ছে সেই বেদীতেই মানুষের হাড় পুড়িয়ে য়োশিয তা ব্যবহারের অয়োগ্য করে তুলবে|” 2 3 এসমস্ত ঘটনা য়ে সত্যি সত্যি ঘটতে চলেছে সে বিষয়ে ঈশ্বরের লোক উপস্থিত সবাইকে প্রমাণ দিলেন| তিনি বললেন, “আমি যা বললাম তা য়ে সত্যি সত্যি ঘটবে সে কথা প্রমাণের জন্য প্রভু আমাকে বলেছেন, ‘এই বেদী ভেঙ্গে দু টুকরো হয়ে সমস্ত ছাই মাটিতে ছড়িয়ে পড়বে|”‘ 4 রাজা যারবিয়াম ঈশ্বরের লোকের কাছ থেকে বৈথেলের বেদীর কথা শুনে বেদী থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে সেই লোককে দেখিয়ে বলল, “ওকে গ্রেপ্তার করো|” কিন্তু একথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই তার হাত পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গেল, সে আর হাত নাড়াতে পারল না| 5 একই সঙ্গে বেদীটি টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে সমস্ত ছাই মাটিতে ছড়িয়ে পড়ল| এর থেকেই ঈশ্বরের লোকরা কথার সত্যতা প্রমাণ হল| 6 তখন রাজা যারবিয়াম ঈশ্বরের লোককে বলল, “দয়া করে আপনার প্রভুর ঈশ্বরের কাছে আমার এই হাতটি আবার ঠিক করে দেবার জন্য প্রার্থনা করুন|”লোকটি তখন প্রভুর কাছে সেই প্রার্থনা করায রাজার হাত ঠিক হয়ে গেল| 7 তখন রাজা ঈশ্বর প্রেরিত সেই লোকটিকে বলল, “অনুগ্রহ করে আপনি আমার সঙ্গে বাড়িতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করবেন চলুন| আমি আপনাকে একটি উপহার দিতে চাই|” 8 কিন্তু সেই লোকটি রাজাকে বলল, “তোমার অর্ধেক রাজত্ব আমাকে দিলেও আমি তোমার সঙ্গে যাবো না বা এখানে কোন পানাহার করব না| 9 প্রভু আমাকে এখানে কিছু খেতে বা পান করতে বারণ করেছেন| প্রভু আমাকে আরো নির্দেশ দিয়েছেন য়ে, য়ে রাস্তা দিয়ে আমি এখানে এসেছি, সেই রাস্তা দিয়ে য়েন না ফিরি|” 10 একথা বলে তিনি বৈথেলে আসার সময় য়ে রাস্তা দিয়ে এসেছিলেন, সেটাতে না গিয়ে অন্য একটা রাস্তা দিয়ে ফিরে গেলেন| 11 বৈথেল শহরে সে সময় একজন বৃদ্ধ ভাববাদী বাস করতেন| তাঁর ছেলেরা এসে তাঁকে বৈথেলের এই ঈশ্বর প্রেরিত ব্যক্তির কার্য়কলাপের কথা জানালো| 12 সেই বৃদ্ধ ভাববাদী সব শুনে জিজ্ঞেস করলেন, “তিনি কোন্ রাস্তা দিয়ে ফিরে গেলেন?” ছেলেরা তখন যিহূদা থেকে আসা সেই ভাববাদী য়ে পথে ফিরে গিয়েছেন পিতাকে দেখালো| 13 বৃদ্ধ ভাববাদী তাঁর পুত্রদের তাঁর গাধায লাগাম লাগিয়ে দিতে বললেন এবং সেই গাধায চড়ে বেরিয়ে পড়লেন| 14 বৃদ্ধ ভাববাদী ঈশ্বর প্রেরিত লোকটিকে খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে দেখলেন একটা মস্ত বড় গাছের তলায় একজন বসে আছেন| তিনি প্রশ্ন করলেন, “আপনি কি ঈশ্বরের লোক যিনি যিহূদা থেকে এসেছেন?”ভাববাদী উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ|” 15 তখন বৃদ্ধ ভাববাদী বললেন, “দয়া করে আমার সঙ্গে বাড়িতে চলুন, কিছু মুখে দেবেন|” 16 কিন্তু ঈশ্বরের লোকটি এতে রাজি হলেন না| তিনি বললেন, “আমি আপনার সঙ্গে বাড়িতে য়েতে বা এখানে কোনো পানাহার করতে পারব না| 17 কারণ প্রভু আমায় নিষেধ করেছেন এবং বলেছেন, ‘তুমি য়ে রাস্তা দিয়ে যাবে সেই রাস্তা দিয়ে ফিরবে না|”‘ 18 তখন বৃদ্ধ ভাববাদী বললেন, “আমিও আপনারই মতো এক জন ভাববাদী|” উপরন্তু তিনি বানিয়ে বললেন, “প্রভুর কাছ থেকে দূত এসে আমায় আপনাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আপনার পানাহারের ব্যবস্থা করতে বলেছেন|” 19 তখন ঈশ্বর প্রেরিত সেই লোকটি বৃদ্ধ ভাববাদীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে পানাহার করলেন| 20 যখন তাঁরা টেবিলে বসে খাওয়া-দাওয়া করছেন তখন প্রভু বৃদ্ধ ভাববাদীর সামনে আবির্ভূত হলেন| 21 বৃদ্ধ ভাববাদী যিহূদা থেকে আসা ঈশ্বরের লোকটিকে বললেন, “প্রভু বললেন আপনি প্রভুর নির্দেশ অমান্য করেছেন|” 22 আপনাকে প্রভু এখানে কিছু খেতে বা পান করতে বারণ করেছিলেন, কিন্তু আপনি সেই নির্দেশ লঙঘন করে এখানে পানাহার করলেন| শাস্তিস্বরূপ আপনার মৃত্যুর পর আপনার দেহ আপনার বংশের সমাধিস্থলে সমাধিস্থ হতে পারবে না|” 23 ইতিমধ্যে ঈশ্বরের লোকটির পানাহার শেষ হলে বৃদ্ধ ভাববাদী তাঁর জন্য গাধায লাগাম ও জিন চড়িয়ে দিলেন এবং সেই ব্যক্তি রওনা হল| 24 পথে এক সিংহের আক্রমণে ঈশ্বর প্রেরিত ব্যক্তির মৃত্যু হল| 25 কিছু পথচারী যাবার সময়ে পথে পড়ে থাকা সেই মৃতদেহটি আর তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাধা ও সিংহটাকে দেখতে পেল| তারা ফিরে এসে শহরে বৃদ্ধ ভাববাদীকে এই খবর দিল| 26 যদিও বৃদ্ধ ভাববাদীর পাল্লায় পড়েই ঈশ্বরের পাঠানো এই ব্যক্তি ফিরে এসে খাওয়া-দাওয়া করেছিলেন, বৃদ্ধ ভাববাদী তারা যা বলল সব শুনলেন এবং বললেন, “প্রভুর আদেশ অমান্য করায প্রভু সিংহ পাঠিয়ে তাঁর পাঠানো ব্যক্তির জীবন নিলেন| প্রভু বলেছিলেন য়ে তিনি এরকম করবেন|” 27 এই বলে তিনি তাঁর পুত্রদের গাধায জিন চাপাতে বলে 28 গাধা নিয়ে বেরিয়ে সেই মৃতদেহের কাছ পৌঁছে দেখতে পেলেন য়ে গাধা আর সিংহ দুটোই সেখানে দাঁড়িয়ে আছে| সিংহটা সেই দেহে মুখ দেয় নি, এমনকি গাধাটাকেও কিছু করে নি| 29 বৃদ্ধ ভাববাদী শোকপ্রকাশ করবার জন্য ও কবর দেবার জন্য গাধায চাপিয়ে মৃতদেহটাকে শহরে নিয়ে চললেন| 30 তিনি সেই ব্যক্তিকে তাঁর নিজের পরিবারের সমাধিস্থলে কবর দিলেন| তারপর তিনি কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “ভাই আমার, তোমার জন্য আমি দু:খিত|” তিনি কবর দেওয়ার পর তাঁর পুত্রদের নির্দেশ দিলেন, “আমি মরলে আমাকেও এই কবরে ওঁর পাশে কবর দিস| আমার হাড় ক’খানাকে ওঁর পাশেই রাখিস| 31 32 প্রভু ওঁর মুখ দিয়ে য়ে কথা বলিযেছেন তা একদিন সত্যিই ঘটবে| বৈথেলের বেদী ও শমরিয়ায অন্যান্য উচ্চস্থানে পূজা করার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য প্রভু ওঁকে ব্যবহার করেছেন|” 33 রাজা যারবিয়ামের কোনোই পরিবর্তন হল না| সে আগের মতোই পাপাচরণ করে য়েতে লাগল| বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠী থেকে যাজক বেছে নিয়ে তাদের দিয়ে উচ্চস্থানে সেবা করাতে লাগল| য়ে কেউ ইচ্ছা হলেই যাজক হয়ে য়েতে পারত| 34 এই পাপের ফলেই তার সাম্রাজ্যের পতন হয় এবং তা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়|
1 য়ে সময় যারবিয়ামের পুত্র অবিয খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, সেই সময় যারবিয়াম তার স্ত্রীকে বলল, “তুমি শীলোতে গিয়ে ভাববাদী অহিযর সঙ্গে দেখা কর| অহিযই সে-ই ভাববাদী যিনি বলেছিলেন, আমি ইস্রায়েলের রাজা হব| তুমি দশটা রুটি, কিছু কেক, এক ভাঁড় মধু নিয়ে তার কাছে গিয়ে আমাদের পুত্রের কি হবে জিজ্ঞেস করো| তিনি নিশ্চয়ই তোমাকে বলে দেবেন| তবে দেখো এমন ভাবে ছদ্মবেশে য়েও যাতে কেউ বুঝতে না পারে য়ে তুমি আমার স্ত্রী|” 2 3 4 কথা মতো যারবিয়ামের স্ত্রী শীলোতে ভাববাদী অহিযের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| যদিও অহিযর তখন অনেক বয়েস হয়েছে এবং দৃষ্টিশক্তি হারিযেছেন| 5 প্রভু তাঁকে বললেন, “যারবিয়ামের স্ত্রী তোমার সঙ্গে দেখা করে ওদের অসুস্থ ছেলে সম্পর্কে জানতে আসছে|” অহিয কি বলবে সেকথাও প্রভু বলে দিলেন|যারবিয়ামের স্ত্রী এসে অহিযর বাড়িতে উপস্থিত হল| সে আত্মগোপন করে এসেছিল| 6 কিন্তু অহিয দরজায তার পাযের শব্দ শুনতে পেয়ে বলল, “এসো গো যারবিয়ামের স্ত্রী| তুমি কেন লোকের কাছে নিজের প্রকৃত পরিচয গোপন করছো? তোমাকে আমি একটা দু:সংবাদ দেব| 7 যাও ফিরে গিয়ে যারবিয়ামকে বলো প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘যারবিয়াম আমি তোমাকে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের মধ্যে থেকে বেছে নিয়ে আমার ভক্তদের অধীশ্বর বানিয়েছি| 8 দায়ূদের বংশধর ইস্রায়েল শাসন করত| কিন্তু আমি সেই রাজ্য তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে তোমাকে দিয়েছিলাম| কিন্তু তুমি আমার সেবক দায়ূদের মতো নও| দায়ূদ একনিষ্ঠ ভাবে আমাকে অনুসরণ করত, আমি যা চাইতাম ও তাই করত| 9 কিন্তু তুমি অনেক বড় বড় পাপ করেছ| তোমার আগে কোন শাসক এতো জঘন্য পাপ করে নি| তুমি আমাকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দিয়েছ| তুমি মূর্ত্তি পূজা ও অন্যান্য দেবতাদের পূজা শুরু করেছ| এর ফলে আমি খুবই ক্রুদ্ধ হয়েছি| 10 তাই আমি তোমার পরিবারে বিপদ ঘনিয়ে আনব| তোমার পরিবারের সমস্ত পুরুষকে আমি হত্যা করব| আগুন য়ে ভাবে ঘুঁটে পোড়ায ঠিক সে ভাবে আমি তোমার পরিবার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেব| 11 তোমার পরিবার থেকে য়ে কেউ শহরে মারা যাবে তাকে কুকুরে খাবে এবং তোমার পরিবারের য়ে লোক মাঠে মারা যাবে তাকে শকুনে খাবে| প্রভু বলেছেন|”‘ 12 ভাববাদী অহিয যারবিয়ামের স্ত্রীকে আরো বললেন, “এবার তুমি বাড়ি যাও| তুমি তোমার শহরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই তোমার পুত্র মারা যাবে| 13 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক কাঁদতে কাঁদতে ওকে সমাধিস্থ করবে| যারবিয়ামের পরিবারে একমাত্র তোমার পুত্রকেই কবরে সমাধিস্থ করা হবে| কারণ যারবিয়ামের পরিবারে এক মাত্র প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর তুষ্ট ছিলেন| 14 প্রভু ইস্রায়েল শাসন করার জন্য এরপর য়ে নতুন রাজা বেছে নেবেন সে যারবিয়ামের বংশ ধ্বংস করবে| এসব ঘটতে আর বেশী দেরী নেই| তারপর প্রভু ঈস্রাযেলের ওপর আঘাত হানবেন| দেশের সমস্ত লোক ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকবে| 15 “তারপর প্রভু ইস্রায়েলের ওপর আঘাত হানবেন| ইস্রায়েলের লোকরা ভীত হবে তারা জলের মধ্যে ঘাসের মতন কাঁপবে| এই ভালো দেশ থেকে প্রভু ইস্রায়েলকে উপড়ে ফেলবেন| এটি সেই দেশ য়েটি তিনি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন| তিনি তাদের ফরাত্ নদীর অপর পারে ছড়িয়ে দেবেন| এসবই ঘটবে কারণ প্রভু লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়েছেন| তিনি ক্রুদ্ধ হয়েছেন কারণ তারা বাঁশ দিয়ে আশেরার মূর্ত্তি বানিয়ে পূজা করেছিল| 16 যারবিয়াম নিজে পাপ করেছে, আর ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়েছে| তাই প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের পরাস্ত হতে দেবেন|” 17 যারবিয়ামের স্ত্রী তির্সাতে ফিরে গেল| বাড়িতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তার পুত্রের মৃত্যু হল| 18 সমগ্র ইস্রায়েল প্রভুর কথা মতো চোখের জলে ভাসতে ভাসতে তাকে কবর দিল| প্রভু তাঁর সেবক ভাববাদী অহিযর মাধ্যমে এসবই জানিয়েছিলেন| 19 রাজা যারবিয়াম আরো অনেক কিছু করেছিল| সে অনেক যুদ্ধ করেছিল এবং লোকদের ওপরে রাজত্ব চালিযে যাচ্ছিল| সে যা করেছিল সে সমস্ত বিবরণই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 20 যারবিয়াম 22 বছর রাজত্ব করার পর তার মৃত্যু হলে তাকে তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল| যারবিয়ামের মৃত্যুর পরে তার পুত্র নাদব নতুন রাজা হলেন| 21 শলোমনের পুত্র রহবিয়াম যখন যিহূদার রাজপদে অধিষ্ঠিত হলেন তখন তাঁর বয়স 41 বছর ছিল| তিনি 17 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| ইস্রায়েলের অন্যান্য শহরের মধ্যে থেকে প্রভু এই শহরটিকে সম্মানিত করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন| রহবিয়ামের মা নয়না ছিলেন জাতিতে অম্মোনীয়া| 22 যিহূদার লোকরা পাপ করেছিল এবং এমন সব কাজ করেছিল যা প্রভু অনুচিত বলে বিবেচনা করেছিলেন| উপরন্তু তারা এমন অনেক কাজ করেছিল যার ফলে প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| এই সমস্ত লোকরা ছিল তাদের পিতৃপুরুষদের চেয়েও খারাপ| 23 এরা উঁচু বেদী ছাড়াও পাথরের স্মৃতিসৌধ, বাঁশের পবিত্র মূর্ত্তি প্রভৃতি বানিয়েছিল| প্রত্যেকটি উচ্চস্থান, সবুজ গাছের তলায় তারা এই সব কদাকার জিনিস বানিয়েছিল| 24 তাদের মধ্যে এমন মানুষ ছিল যারা অন্য দেবতার পূজার জন্য রতিক্রিযার্থে দেহ বিক্রয় করেছিল| যিহূদার অনেক লোক অনেক মন্দ কাজ করেছিল| এই পবিত্র ভূভাগে আগে যারা বাস করত ঈশ্বর তাদের হাত থেকে জমি কেড়ে নিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন| 25 রহবিয়ামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে মিশরের রাজা শীশক জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন| 26 শীশক প্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ থেকে সমস্ত সম্পদ, এমনকি দায়ূদের বানানো সোনার ঢালগুলো পর্য়ন্ত নিয়ে যান| 27 তখন রহবিয়াম এই জায়গায় রাখার জন্য পিতল দিয়ে নতুন ঢাল বানালেন| তিনি এই নতুন ঢালগুলো রাজপ্রাসাদের দরজায প্রহরীদের রাখতে দিয়েছিলেন| 28 এরপর যখনই রাজা মন্দিরে য়েতেন প্রহরীরা তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ঐ ঢালগুলো নিয়ে য়েত| তারপর যখন প্রহরীরা ফিরে আসত, তারা ঐ ঢালগুলি প্রহরী কক্ষের দেওয়ালের ওপর আবার রেখে দিত| 29 রাজা রহবিয়াম য়ে সমস্ত কাজ করেছিলেন তা ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 30 রহবিয়াম ও যারবিয়াম দুজনেই সব সময় একে অন্যের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকতেন| 31 রহবিয়াম মারা যাবার পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরে সমাধিস্থ করা হল| তাঁর মা ছিলেন নয়মা| তিনি ছিলেন অম্মোনীয় জাতীয| রহবিয়ামের পর তার পুত্র অবিয়াম নতুন রাজা হলেন|
1 নবাটের পুত্র ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের 18 বছরের মাথায় অবিয়াম যিহূদার নতুন রাজা হলেন| 2 অবিয়াম জেরুশালেমে তিন বছর রাজত্ব করেন| তাঁর মা মাখা ছিলেন অবীশালোমের কন্যা| 3 অবিয়ামও তাঁর পিতার মতো যাবতীয় পাপ করেছিলেন| তিনি মোটেই তাঁর পিতামহ দায়ূদের মতো প্রভুর একনিষ্ট ভক্ত ছিলেন না| 4 প্রভু দায়ূদকে ভালবাসতেন বলে অবিয়ামকে জেরুশালেমে রাজত্ব করতে দিয়েছিলেন| প্রভু দায়ূদকে পুত্রলাভ করতে দিয়েছিলেন এবং তিনি দায়ূদের জন্য জেরুশালেমকে নিরাপদে রেখেছিলেন| 5 একমাত্র হিত্তীয় ঊরিযর ঘটনা ছাড়া দায়ূদ জীবনের সব ক্ষেত্রেই কাযমনোবাক্যে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন| 6 রহবিয়াম ও যারবিয়াম দুজনেই সব সময় পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গিয়েছেন| 7 অবিয়াম আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে|অবিয়ামের রাজত্বের গোটা সময়টুকু কেটেছিল যারবিয়ামের সঙ্গে যুদ্ধ বিগ্রহ করে| 8 অবিয়ামের মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর পুত্র আসা নতুন রাজা হলেন| 9 ইস্রায়েলে যারবিয়ামের রাজত্বের 20 বছরের মাথায় আসা যিহূদার রাজা হলেন| 10 আসা জেরুশালেমে 41 বছর রাজত্ব করেছিলেন| অবীশালোমের কন্যা মাখা ছিলেন আসার ঠাকুরমা| 11 আসা তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতো প্রভু নির্দেশিত সত্ পথে জীবনযাপন করেন| 12 তাঁর রাজত্বের সময় য়ে সমস্ত ব্যক্তি অন্য মূর্ত্তির সেবার জন্য রতিক্রিযার্থে নিজেদের দেহ বিক্রয় করেছিল তাদের তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন| তিনি সেই দেশ থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের তৈরী সমস্ত মূর্ত্তিও সরিয়ে ফেলেছিলেন| 13 আসা তার ঠাকুরমা মাখাকেও রাণীর পদ থেকে অপসারণ করেন| কারণ মাখা বিধর্মী দেবী আশেরার ঐ বীভত্স মূর্ত্তিসমূহ নির্মাণ করিযে ছিলেন| এই মূর্ত্তিটিকে ভেঙে আসা কিদ্রোণ নদীর ধারে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন| 14 উচ্চ বেদীগুলিকে ধ্বংস না করলেও আসা আজীবন প্রভুর প্রতি অনুরক্ত ছিলেন| 15 সমস্ত সোনা, রূপো এবং প্রভুর জন্য দেওয়া অন্যান্য উপহারসামগ্রী য়েগুলি তাঁর পিতা দায়ূদের দ্বারা সংরক্ষিত ছিল এবং য়েগুলি লোকে দান করেছিল, আসা সেগুলি প্রভুর মন্দিরে রেখে দিয়েছিলেন| 16 যিহূদায় রাজত্ব কালে গোটা সময়টাই আসার কেটেছিল ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে যুদ্ধ করে| 17 বাশা যিহূদার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন কারণ কোনো লোককে আসার রাজত্ব থেকে বাইরে য়েতে দিতে বা সেখানে য়েতে দেওয়া বন্ধ করতে চেয়েছিলেন| একারণে তিনি রামা শহরটিকে খুব সুরক্ষিত ভাবে বানিয়ে ছিলেন| 18 আসা তাই প্রভুর মন্দিরের কোষাগার থেকে এবং রাজপ্রাসাদ থেকে সমস্ত সোনা ও রূপো বের করে ভৃত্যদের হাত দিয়ে সে সব হিষিযোণের পৌত্র টব্রিম্মোণের পুত্র অরামের রাজা বিন্হদদকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন| দম্মেশক ছিল বিন্হদদের রাজ্যের রাজধানী| 19 আসা বিন্হদদকে বলে পাঠান, “আমার পিতা ও আপনার পিতার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল| এখন আমি আপনার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে চাই| তাই আমি আপনাকে এই সমস্ত সোনা-রূপো উপহারস্বরূপ পাঠালাম| অনুগ্রহ করে আপনি ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে আপনার সন্ধি ভঙ্গ করুন, যাতে সে আপনাদের নিজেদের মতো থাকতে দিয়ে তার নিজের দেশে ফিরে যায়|” 20 বিন্হদদ আসার সঙ্গে চুক্তি করে তার সেনাবাহিনীকে ইযোন, দান, আবেল-বৈত্-মাখা, নপ্তালি ও গালীলী হ্রদের আশেপাশের ইস্রায়েলীয় শহরগুলোতে যুদ্ধ করতে পাঠালেন| 21 এ খবর পেয়ে বাশা রামা শহর সুদৃঢ় করার কাজ বন্ধ করে তির্সাতে ফিরে এলেন| 22 তখন রাজা আসা যিহূদার সমস্ত লোকদের সাহায্য প্রার্থনা করে নির্দেশ দিলে সকলে মিলে রামাতে গেল| তারপর সেখান থেকে রামা শহরটাকে শক্ত করে বানানোর জন্য বাশা য়ে সব পাথর ও কাঠ এনেছিল সেই সব বিন্যামীনের দেশ গেবা ও মিস্পাতে বয়ে আনা হলো| এরপর আসা এই দুটো শহরকে সুদৃঢ় করে তুললেন| 23 আসা সম্পর্কিত অন্যান্য যাবতীয় তথ্য় উনি য়ে সমস্ত কাজ করেছিলেন বা য়ে সব শহর বানিয়ে ছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| য়েহেতু আসা বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর পাযে একটা রোগ হয়| 24 আসার মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরীতে কবর দেওয়া হল| এরপর আসার পুত্র যিহোশাফট নতুন রাজা হলেন| 25 যিহূদায় আসার রাজত্বের দ্বিতীয় বছরের সময় যারবিয়ামের পুত্র নাদব ইস্রায়েলের রাজা হন| তিনি দু বছর রাজত্ব করেছিলেন| 26 নাদব তাঁর পিতা যারবিয়ামের মতোই যাবতীয় পাপ কর্মে লিপ্ত হলেন| যারবিয়াম রাজা থাকাকালীন তিনি ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়েছিলেন| 27 ইষাখর পরিবারগোষ্ঠীর অহিযের পুত্র বাশা, রাজা নাদবকে হত্যার একটি চক্রান্ত করেছিলেন| এসময় নাদব ও ইস্রায়েলের সবাই গিব্বথোন শহরের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল| গিব্বথোন শহরটি পলেষ্টীয় অধিকৃত ছিল| 28 এই শহরেই বাশা নাদবকে হত্যা করেছিলেন| আসার যিহূদার রাজত্বের তৃতীয় বছরে এ ঘটনা ঘটে| এরপর বাশা ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন| 29 ইস্রায়েলের রাজা হবার পর বাশা যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে একে একে হত্যা করলেন| প্রভু য়ে ভাবে সেই শীলোনীয অহিযের মাধ্যমে ভাববাণী করেছিলেন, ঠিক সে ভাবেই এই সমস্ত ঘটনা ঘটলো| 30 যারবিয়ামের পাপের ফলেই তার বংশের সবাইকে মরতে হলো| ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়ে যারবিয়াম প্রভুকে খুবই ক্রুদ্ধ করে তুলেছিল| 31 নাদব আর যা কিছু করেছিলেন সে সব ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 32 বাশার ইস্রায়েলে রাজত্বের গোটা সময়টাই যিহূদার রাজা আসার সঙ্গে যুদ্ধ করে কেটেছিল| 33 আসার যিহূদার রাজত্বের তৃতীয় বছরের মাথায় অহিযর পুত্র বাশা ইস্রায়েলের রাজা হলেন| বাশা তির্সাতে 24 বছর রাজত্ব করেছিলেন| 34 কিন্তু বাশা তাঁর পিতা যারবিয়ামের মতোই পাপাচরণ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের এমনসব পাপাচরণের কারণ হয়েছিলেন যা প্রভুর মন:পুত ছিল না|
1 প্রভু তখন হনানির পুত্র য়েহূর সঙ্গে কথা বললেন এবং রাজা বাশার বিরুদ্ধে কথা বললেন| 2 তিনি বললেন, “আমি তোমাকে ধূলো থেকে উঠিযে এনে ইস্রায়েলে আমার লোকদের নেতা করেছিলাম| কিন্তু তুমি যারবিয়ামের আচরণ অনুসরণ করেছ| আমার ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়েছ এবং তারা তাদের পাপ দিয়ে আমাকে ক্রুদ্ধ করেছে| 3 তাই বাশা, আমি তোমাকে এবং তোমার পরিবারকে ধ্বংস করব| নবাটের পুত্র যারবিয়ামের পরিবারের য়ে দশা হয়েছিল তোমাদেরও তাই হবে| 4 তোমার পরিবারের সবাই শহরের পথেঘাটে মারা পড়বে, কুকুরে তাদের মৃতদেহ ছিঁড়ে খাবে| অন্যরা মাঠেঘাটে মরে পড়ে থাকবে| চিল শকুনী তাদের মৃতদেহ ঠোকরাবে|” 5 বাশা ও তাঁর উল্লেখয়োগ্য কীর্তির সব কিছুই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 6 বাশার মৃত্যুর পর তাঁকে তির্সাতে সমাধিস্থ করা হল| এরপর তাঁর পুত্র এলা নতুন রাজা হলেন| 7 যারবিয়ামের পরিবারের মতোই বাশাও প্রভুর বিরুদ্ধে বহু পাপাচরণ করে, যার ফরে প্রভু তার প্রতি ক্রুদ্ধ হন এবং ভাববাদী য়েহূকে বাশার পরিণতির কথা জানিয়ে দেন| বাশা যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে হত্যা করার জন্যও প্রভু তাঁর প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| 8 আসার যিহূদার রাজত্বের 26 বছরের মাথায় বাশার পুত্র এলা ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন| এলা তির্সাতে দুবছর রাজত্ব করেছিলেন| 9 সিম্রি ছিলেন এলার অধীনস্থ একজন রাজকর্মচারী| সিম্রি এলার অর্ধেক রথ বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন| সিম্রি এলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিলেন|রাজা এলা তখন অর্সার বাড়িতে বসে দ্রাক্ষারস পান করছিলেন| অর্সা তির্সার প্রাসাদরক্ষক ছিল| 10 সিম্রি সে সময় ঐ বাড়িতে ঢুকে এলাকে হত্যা করেন| যিহূদাতে আসার রাজত্বের 27 বছরের মাথায় এই ঘটনা ঘটে| সিম্রি এলার পরে ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলো| 11 সিম্রি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হবার পর তিনি একে একে বাশার পরিবারের সকলকে হত্যা করলেন, কাউকে রেহাই দিলেন না| সিম্রি বাশার বন্ধু-বান্ধবদেরও সবাইকে হত্যা করলেন| প্রভু য়েভাবে ভাববাদী য়েহূর কাছে বাশার মৃত্যু সম্পর্কে ভাববাণী করেছিলেন ঠিক সে ভাবেই বাশা ও তাঁর পরিবারের সকলের মৃত্যু হল| 12 13 বাশা ও তাঁর পুত্র এলার পাপাচরণের জন্যই এই ঘটনা ঘটলো| তাঁরা শুধু নিজেরাই পাপ করেন নি, ইস্রায়েলের লোকদেরও পাপাচরণে বাধ্য করেছিলেন| য়ে কারণে প্রভু তাদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| এছাড়াও তারা মূর্ত্তি পূজা করতেন বলে প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| 14 এলা আর যা কিছু করেছিলেন তা ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 15 যিহূদাতে আসার রাজত্বের 27তম বছরে সিম্রি ইস্রায়েলের রাজা হলেন| সিম্রি মাত্র 7 দিনের জন্য তির্সাতে রাজত্ব করেছিলেন| পলেষ্টীয় অধিকৃত গিব্বথোনের কাছে ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী তখন শিবির গেড়েছিল| তারা সে সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল| 16 তাদের কানে এলো সিম্রি ইস্রায়েলের রাজার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাঁকে হত্যা করেছেন| তখন ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা সেই শিবিরেই সেনাপতি অম্রিকে ইস্রায়েলের রাজা হিসেবে ঠিক করলো| 17 তখন অম্রি ও ইস্রায়েলের সবাই গিব্বথোন থেকে এসে তির্সা আক্রমণ করলো| 18 সিম্রি যখন বুঝতে পারলেন তির্সা শত্রুপক্ষের দখলে চলে গেছে, তখন তিনি রাজপ্রাসাদে নিজেকে বন্ধ করে প্রাসাদে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন| 19 সিম্রিও যারবিয়ামের মতোই প্রভুর অনভিপ্রেত পাপাচরণ করেছিলেন ও ইস্রায়েলের লোকদের পারকার্য়্য়ের কারণ হয়েছিলেন| আর এই পাপের জন্যই সিম্রির মৃত্যু হল| 20 সিম্রির গল্প, তাঁর চক্রান্ত ও অন্যান্য যা কিছু তিনি করেছিলেন তা ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| সিম্রি রাজা এলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পর কি হয়েছিল সেই কথাও এই গ্রন্থে লেখা আছে| 21 সে সময়ে ইস্রায়েলের বাসিন্দারা দুটি দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিল| অর্ধেক লোক চাইছিল গীনতের পুত্র তিব্নিকে রাজা করতে, বাকী অর্ধেক ছিল অম্রির অনুগামী| 22 অম্রির সমর্থকরা বেশী শক্তিশালী হওয়ায় তিব্নি নিহত হলেন এবং অম্রি নতুন রাজা হলেন| 23 আসা যিহূদায় রাজত্ব করার 31 বছরের মাথায় অম্রি ইস্রায়েলের রাজা হন| তিনি 12 বছর ইস্রায়েল শাসন করেন| তার মধ্যে 6 বছর তিনি তির্সা শহর থেকে রাজত্ব করেছিলেন| 24 অম্রি 150 পাউণ্ড রূপো দিয়ে শেমরের কাছ থেকে শমরিয়া পাহাড়টি কিনে সেখানে একটি শহর বানান| পাহাড়ের আগের মালিক শেমরের নামেই তিনি ঐ শহরটির নাম শমরিয়া দিয়েছিলেন| 25 প্রভু যা যা অনুচিত হলে ঘোষণা করেছিলেন, রাজা অম্রি ঠিক সেইগুলোই করেছিলেন| তাঁর আগে য়ে সব রাজারা রাজত্ব করেছিলেন তিনি তাঁদের চেয়েও খারাপ ছিলেন| নবাটের পুত্র যারবিয়াম য়ে সব পাপ করেছিলেন তিনিও ঠিক সেই পাপগুলো করেছিলেন এবং তিনি ইস্রায়েলের লোকদেরও পাপের কারণ হয়েছিলেন| অতএব তাঁরা ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভুকে ক্রুদ্ধ করে তুলেছিলেন কারণ তাঁরা অর্থহীন, মূল্যহীন মূর্ত্তিসমূহের পূজা করেছিলেন| 26 27 অম্রি সম্পর্কে আর সব কিছু তিনি যা যা উল্লেখয়োগ্য কাজ করেছিলেন ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 28 অম্রির মৃত্যুর পর তাঁকে শমরিয়া শহরেই সমাধিস্থ করা হল| তাঁরপর তাঁর পুত্র আহাব নতুন রাজা হলেন| 29 আসার যিহূদার রাজত্ব কালের 38 বছরের সময়ে অম্রির পুত্র আহাব ইস্রায়েলের রাজা হন| আহাব শমরিয়া শহর থেকে 22 বছর ইস্রায়েল শাসন করেছিলেন| 30 আহাব তাঁর আগের রাজাদের তুলনায় আরো খারাপ ছিলেন| প্রভু যা কিছু অন্যায বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি সেগুলোই করেছিলেন| 31 নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতো পাপাচরণ করেও আহাব ক্ষান্ত হন নি, উপরন্তু তিনি সীদোনীয় রাজা ইত্বালের কন্যা ঈষেবলকে বিয়ে করেছিলেন| এরপর আহাব বাল মূর্ত্তির পূজা করতে শুরু করেন এবং 32 শমরিয়া শহরে বাল পূজার জন্য একটা মন্দির করে সেখানে বেদী বানিয়ে দিয়েছিলেন| 33 আশেরার আরাধনার জন্যও তিনি একটি খুঁটি পুঁতে দিয়েছিলেন| ইস্রায়েলে তাঁর আগে অন্য য়ে সব রাজা শাসন করেছিলেন তাঁদের তুলনায় প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে ক্রুদ্ধ করার মতো আহাব অনেক বেশী পাপকার্য়্য় করেছিলেন| 34 আহাবের শাসন কালে বৈথেলের হীযেল য়িরীহো শহরটি পুননির্মাণ করেছিলেন| এই কাজের ফলস্বরূপ হীযেল য়ে সময়ে শহরটি বানানোর কাজ শুরু করেন, সে সময় তাঁর বড় ছেলে অবীরাম মারা যায়| আর শহরের তোরণ বসানোর কাজ শেষ হলে হীযেলের ছোট ছেলে সগুবেরও মৃত্যু হল| নূনের পুত্র যিহোশূযের মাধ্যমে প্রভু য়ে ভাবে ভাববাণী করেছিলেন ঠিক সে ভাবেই এই সব ঘটেছিল|
1 গিলিয়দের তিশ্বী শহরে এলিয় নামে এক ভাববাদী বাস করতেন| তিনি রাজা আহাবকে বললেন, “আমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভুর সেবক| আমি সেই প্রভুর নামে অভিশাপ দিলাম আগামী কয়েক বছর বৃষ্টিপাত তো দূরের কথা, এদেশে এক ফোঁটা শিশির পর্য়ন্ত আর পড়বে না| এক মাত্র আমি নির্দেশ দিলেই আবার বৃষ্টিপাত হবে|” 2 প্রভু তখন এলিয়কে সে জায়গা ছেড়ে যর্দন নদীর পূর্ব দিকে করীত্ খাঁড়ির কাছে লুকিয়ে থাকতে বললেন| 3 4 তিনি এলিয়কে জানান য়ে তিনি কাক ও শকুনিদের রোজ তাঁর জন্য সেখানে খাবার এনে দেবার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তৃষ্ণা পেলে এলিয় করীতের জলধারা থেকে জলপানও করতে পারবেন| 5 প্রভুর নির্দেশ মতো এলিয় তখন য়র্দনের পূর্বদিকে করীত্ খাঁড়ির কাছে বাস করতে গেলেন| 6 প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে কাক ও শকুনিরা এলিয়কে খাবার এনে দিত আর তৃষ্ণা পেলে তিনি করীতের স্রোত থেকে জল পান করতেন| 7 কিন্তু অনাবৃষ্টির দরুণ করীতের জলধারা শুকিয়ে গেল| 8 তখন প্রভু এলিয়কে 9 সীদোনের সারিফতে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন| তিনি বললেন, “সেখানে এক বিধবা রমণী বাস করে| আমি তাঁকে তোমার খাবারের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছি|” 10 এলিয় তখন সারিফত নগরের দরজার কাছে গিয়ে এক বিধবা মহিলাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পেলেন| সে আগুন জ্বালানোর জন্য কাঠ জড়ো করছিল| এলিয় তাঁকে বললেন, “আমায় একটু খাবার জল এনে দিতে পারো?” 11 সেই মহিলা জল আনতে যাবার সময় এলিয় আবার তাকে অনুরোধ করলেন, “দয়া করে আমার খাবার জন্য এক টুকরো রুটি এনো|” 12 কিন্তু সেই মহিলা উত্তর দিলেন, “আমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের সামনে দিব্য়ি খেযে বলছি, আমার ঘরে রুটি নেই| শুধু বযামে অল্প একটু মযদা আর শিশিতে অল্প খানিক তেল রাখা আছে| আমি এখানে কাঠ কুড়োতে এসেছিলাম| আমি এই কাঠ বাড়ীতে বয়ে নিয়ে যাবো এবং আগুন বালিয়ে রুটি সেঁকব এবং আমার পুত্র ও আমি আমাদের শেষ আহার করব এবং তারপর খিদের জ্বালায মরে যাবো|” 13 এলিয় সেই মহিলাকে বললেন, “কোনো চিন্তা কোরো না| কথা মতো বাড়ি গিয়ে রান্না চড়াও| কিন্তু তার আগে ঐ মযদা থেকে ছোট্ট একটা রুটি বানিয়ে আমার জন্য নিয়ে এসো| তারপর তুমি তোমার আর তোমার পুত্রের জন্য রান্না করো| 14 ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর বললেন, ‘ঐ মযদার কৌটো কখনও শূন্য হবে না| যত দিন না প্রভু এ দেশে বৃষ্টি পাঠাচ্ছেন তত দিন পর্য়ন্ত ঐ শিশির তেলও আর কমবে না|”‘ 15 তখন ঐ মহিলা বাড়ি ফিরে গিয়ে এলিয়র কথা মতো কাজ করল| এলিয়, ঐ মহিলাটি এবং তার পুত্র বহু দিনের জন্য য়থেষ্ট খাদ্য পেয়েছিল| 16 প্রভু এলিয়কে যা ভাববাণী করেছিলেন, সেই কথা মতোই ঐ মযদার বযাম ও তেলের শিশি কখনও শূন্য হয় নি| 17 কিছু দিন পরে মহিলার পুত্র খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে| শেষে এক সময় তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে 18 মহিলা এলিয়কে এসে বলল, “আপনি ঈশ্বরের লোক, আপনি কি আমায় সাহায্য করতে পারবেন? নাকি আপনি এখানে এসে কেবল আমাকে আমার পাপের কথা মনে করিযে দিয়ে আমার পুত্রকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবেন?” 19 এলিয় তাকে বললেন, “তোমার পুত্রকে আমার কাছে এনে দাও|” তারপর এলিয় পুত্রটিকে ওপরে নিয়ে গিয়ে য়ে ঘরে তিনি থাকতেন তার নিজের খাটে শুইযে দিলেন| 20 তারপর এলিয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু, আমার ঈশ্বর, এই বিধবা রমণী আমাকে তার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছে| আপনি কি তার প্রতি এই অনাচার করবেন? আপনি কি তার পুত্রকে মারা য়েতে দেবেন?” 21 তারপর এলিয় পর পর তিন বার সেই ছেলেটার ওপর শুয়ে প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু, আমার ঈশ্বর, এই ছেলেটাকে পুনর্জীবিত করুন|” 22 প্রভু এলিয়র ডাকে সাড়া দিলেন| ছেলেটি বেঁচে উঠল এবং আবার স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে শুরু করল| 23 এলিয় তখন ছেলেটিকে নীচের তলায় নিয়ে গিয়ে তার মায়ের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, “দেখো, তোমার পুত্র বেঁচেই আছে!” 24 সেই মহিলা তখন বলল, “এবার আমার সত্যি সত্যি বিশ্বাস হল য়ে আপনি ঈশ্বরের লোক! প্রভু সত্যিই আপনার মুখ দিয়ে কথা বলেন!”
1 একটানা তিন বছর অনাবৃষ্টির পর প্রভু এলিয়কে বললেন, “আমি আবার শীগ্গিরই বৃষ্টি পাঠাবো| যাও গিয়ে রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করো|” 2 এলিয় তখন আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন|সে সময়ে শমরিয় শহরে দুর্ভিক্ষ চলছিল| 3 রাজা আহাব তাই ওবদিয, য়ে প্রাসাদ রক্ষনাবেক্ষণ করত তাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন| ওবদিয প্রকৃত অর্থেই প্রভুর অনুগামী ছিলেন| 4 এক সময়ে ঈষেবল প্রভুর সমস্ত ভাববাদীদের হত্যা করতে শুরু করেছিলেন| ওবদিয 100 জন ভাববাদীকে দুটি গুহার মধ্যে 50 ভাগের দুটি দলে লুকিয়ে রেখে ছিলেন এবং নিয়মিত তাদের খাবার ও জল এনে দিতেন| 5 রাজা আহাব ওবদিযকে বললেন, “চলো, আমরা বেরিয়ে সমস্ত ঝর্ণা আর নদীগুলোতে গিয়ে দেখি আমাদের ঘোড়া আর খচ্চরগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার মতো ঘাস পাওয়া যায় কি না|” 6 দুজনে দুটি অঞ্চল ভাগ করে নিয়ে সারা দেশে জলের খোঁজে বের হল| আহাব গেলেন এক দিকে আর ওবদিয গেল আরেক দিকে| 7 ওবদিযর সঙ্গে পথে এলিয়র দেখা হল| এলিয়কে দেখেই ওবদিয চিনতে পারল এবং তাঁর সামনে নতজানু হয়ে জিজ্ঞেস করল, “এলিয়! সত্যিই কি আপনি আমার সেই মনিব?” 8 এলিয় বললেন, “হ্যাঁ, আমি এসেছি| যাও তোমার রাজাকে এ খবর জানাও|” 9 তখন ওবদিয বলল, “আমি যদি আহাবকে বলি য়ে আপনি কোথায আছেন আমি জানি তাহলে আহাব আমাকে মেরে ফেলবেন| প্রভু আমি তো আপনার কাছে কোনো অপরাধ করি নি, তাহলে আপনি কেন আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন?” 10 রাজা পাগলের মতো উন্মত্ত হয়ে প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, চতুর্দিকে আপনার খোঁজে লোক পাঠিয়েছেন| প্রত্যেকটা দেশে তিনি আপনাকে খুঁজতে লোক পাঠিয়ে ছিলেন এবং সেখানে আপনাকে পাওয়া না গেলে আহাব সেখানকার শাসকদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায করেছেন, য়ে সত্যি সত্যিই আপনি সেই সব দেশে নেই| 11 আর এখন আপনি আমাকে বলছেন, রাজার কাছে গিয়ে আপনার এখানে থাকার খবর দিতে| 12 আমি গিয়ে রাজা আহাবকে একথা বলার পর, রাজা যখন আপনাকে খুঁজতে আসবেন তখন হয়তো প্রভু আপনাকে অন্য কোন জায়গায় নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখবেন আর আপনাকে খুঁজে না পেয়ে রাজা আমাকেই তখন হত্যা করবেন| আমি সেই ছোটবেলা থেকে প্রভুকে অনুসরণ করে চলেছি| 13 আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আমি কি করেছিলাম| ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদীদের হত্যা করছিলেন, আমি তখন তাদের 50 জন করে দুভাগে মোট 100 জন ভাববাদীকে দুটো গুহায লুকিয়ে রেখে নিয়মিত খাবার ও জল দিয়েছিলাম| 14 আর এখন আপনি আমাকে রাজার কাছে গিয়ে বলতে বলছেন, য়ে আপনি এখানে আছেন| রাজা সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে হত্যা করবেন|” 15 এলিয় তখন বললেন, “সর্বশক্তিমান প্রভুর উপস্থিতি য়েরকম সত্য, আমিও সেই রকমই প্রতিশ্রুতি করছি য়ে আমি রাজার সামনে আজ দাঁড়াব|” 16 ওবদিয তখন রাজা আহাবকে গিয়ে এলিয় কোথায আছে তা জানাল| রাজা আহাব এলিয়র সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| 17 আহাব এলিয়কে দেখে প্রশ্ন করল, “তুমিই কি সেই লোক যার জন্য ইস্রায়েলের এই দুরবস্থা?” 18 এলিয় উত্তর দিলেন, “আমার জন্য ইস্রায়েলের কোনো দুর্দশাই হয় নি| তুমি ও তোমার পিতৃপুরুষরাই এজন্য দাযী| তোমরা প্রভুর আদেশ অমান্য করে মূর্ত্তির পূজা শুরু করেছ| 19 এখন ইস্রায়েলের সবাইকে কর্ম্মিল পর্বতে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলো| বালদেবের 450 জন ভাববাদী ও রানী ইষেবল সমর্থক আশেরার মূর্ত্তির 400 জন ভাববাদীকেও য়েন ওখানে আনা হয়|” 20 আহাব তখন সমস্ত ইস্রায়েলীয় ও ঐসব ভাববাদীদের কর্ম্মিল পর্বতে ডাকলেন| 21 এলিয় তখন সবাইকে বললেন, “তোমরা কবে স্থির করবে কোন দেবতাকে তোমরা অনুসরণ করবে? শোনো, প্রভুই যদি সত্য ঈশ্বর হন তাহলে তাঁকে অনুসরণ করো| আর বাল মূর্ত্তিকে যদি তোমাদের প্রকৃত দেবতা বলে মনে হয় তাহলে তাঁকে অনুসরণ করো|”লোকরা কিছুই বলল না| 22 তখন এলিয় তাদের বললেন, “আমি এখানে প্রভুর এক মাত্র ভাববাদী হিসেবে উপস্থিত আছি| আর বালদেবের অনুগামী 450 জন ভাববাদী আছেন| 23 এবার দুটো ষাঁড় নিয়ে আসা হোক্| বাল মূর্ত্তির ভাববাদীরা তার একটি কেটে টুকরো টুকরো করে কাঠের ওপর রাখুন| আমি অন্যটাকে কেটে টুকরো করে কেটে কাঠের ওপর রাখছি| আমরা কেউই নিজে থেকে কাঠে আগুন ধরাবো না| আমি আমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করছি| বাল মূর্ত্তির অনুগামী ভাববাদীরাও তাঁদের দেবতার কাছে প্রার্থনা করুন| যার প্রার্থনায সাড়া দিয়ে কাঠে আগুন জ্বলে উঠবে, তার দেবতাই আসল প্রমাণিত হবেন| সমস্ত লোক এই পরিকল্পনায সায় দিল| 24 25 এলিয় তখন বাল মূর্ত্তির ভাববাদীদের ডেকে বললেন, “আপনারা সংখ্যায় অনেক| আপনারাই প্রথম যান| য়ে ভাবে বললাম ষাঁড়টাকে কেটে ঠিক করুন| তবে আগুন জ্বালাবেন না|” 26 তখন বাল মূর্ত্তির অনুগামী ভাববাদীরা তাঁদের য়ে ষাঁড়টি দেওয়া হয়েছিল সেটাকে কথা মতো কেটে সাজালেন| তারপর তাঁরা বেলা দুপুর পর্য়ন্ত বাল মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা করলেন, তাঁদের বানানো য়জ্ঞবেদী ঘিরে নাচানাচি করলেন কিন্তু কেউ তাঁদের প্রার্থনায সাড়া দিল না, আগুন জ্বললো না| 27 দুপুর গড়িযে গেলে এলিয় এই সব ভাববাদীদের নিয়ে রসিকতা শুরু করলেন| এলিয় বললেন, “বাল যদি সত্যি সত্যিই দেবতা হন, তাহলে একটু জোরে প্রার্থনা করা উচিত্! হয়তো উনি এখন ভাবনায ডুবে আছেন! কিম্বা হয়তো ঘুম লাগিয়েছেন| না না! আপনাদের আরেকটু জোরে হাঁকডাক করে ওঁকে ঘুম থেকে তোলা দরকার|” 28 একথা শুনে এই সব ভাববাদীরা তারস্বরে প্রার্থনা করতে লাগলেন| ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজেদের ক্ষতবিক্ষত করে রক্ত বের করে ফেললেন| (বালদেবের আরাধনার এটিও একটি বিশেষ প্রক্রিযা ছিল|) 29 কিন্তু দুপুর থেকে বিকেল গড়িযে গেল তখনও আগুন ধরার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না| ক্রমে বিকেলের বলিদানের সময় ঘনিয়ে এলো, ভাববাদীরা উন্মত্তের মতো ডাকাডাকি করতে লাগলেন কিন্তু বালদেবের দিক থেকে কোনো সাড়াই পাওয়া গেল না| 30 এলিয় তখন সমস্ত লোকদের বললেন, “এবার আমার কাছে এসো|” সকলে এলিয়কে ঘিরে দাঁড়ালে, এলিয় প্রথমে প্রভুর ভেঙ্গে যাওয়া বেদীটিকে ঠিক করলেন| 31 তারপর ইস্রায়েলের 12টি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকের নামে একটা করে মোট 12টি পাথর খুঁজে বের করলেন| যাকোবের 12 জন সন্তানের নামে এই 12টি পরিবারগোষ্ঠীর নামকরণ হয়েছিল| যাকোবকেই প্রভু ইস্রায়েল বলে ডেকেছিলেন| 32 এলিয় প্রভুকে সম্মান জানাতে এই পাথরগুলো দিয়ে য়জ্ঞবেদীটি ঠিক করেছিলেন| তারপর তিনি বেদীর পাশে 7 গ্য়ালন জল ধরার মতো একটি ছোট ডোবা কাটলেন, 33 এবং সমস্ত জ্বালানি কাঠ বেদীতে রাখলেন| ষাঁড়টাকে টুকরো করে কাটার পর এলিয় সেইসব টুকরো কাঠের ওপর রাখলেন| 34 তারপর তিনি বললেন, “চারটে পাত্রে জল ভরে নিয়ে এসে সেই জল এই মাংসের টুকরো ও কাঠের ওপর ছড়িয়ে দাও|” 35 এলিয় এরপর তিন বার একাজ করলে, বেদী থেকে জল গড়িযে পড়ে ডোবাটা ভরিয়ে দিল| 36 তখন বৈকালিক বলিদানের সময়| ভাববাদী এলিয় বেদীর কাছে গিয়ে প্রার্থনা করলেন, “প্রভু অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের ঈশ্বর, আমি আপনাকে আহ্বান করছি| আপনি এসে প্রমাণ করুন য়ে আপনিই ইস্রায়েলের প্রকৃত ঈশ্বর| এই সব লোককে দেখান য়ে আপনিই আমাকে এসব করবার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন| 37 হে প্রভু, আপনি এসে আমার ডাকে সাড়া দিলে তবেই এই সব লোকরা বুঝতে পারবে আপনিই তাদের আপনার কাছে ফিরিযে নিলেন|” 38 তখন প্রভু আগুন পাঠালেন| সেই আগুনে সমস্ত বলি, কাঠ, পাথর বেদীর পাশের মাটি পর্য়ন্ত পুড়ে গেল| আগুন ডোবায জমা জলকে ভক্ষণ করে নিল. 39 সমস্ত লোক এ ঘটনা দেখে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে বলতে শুরু করলো, “প্রভুই ঈশ্বর| প্রভুই ঈশ্বর|” 40 এলিয় তখন বললেন, “বাল মূর্ত্তির সমস্ত ভাববাদীদের ধরে নিয়ে এসো| একটাও য়েন পালাতে না পারে|” তখন সবাই মিলে ঐ সমস্ত ভাববাদীদের ধরে নিয়ে এল| এলিয় তাদের কীশোনের খাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করলেন. 41 এলিয় তখন রাজা আহাবকে বললেন, “যাও এবার গিয়ে পানাহার করো| প্রবল বৃষ্টি আসছে|” 42 রাজা আহাব তখন খেতে গেলেন আর এলিয় কর্ম্মিল পর্বতের চূড়ায় গিয়ে নতজানু হয়ে হাঁটুতে মাথা ঠেকিযে 43 তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “সমুদ্রের দিকে তাকাও|”সেই ভৃত্য তখন য়েখান থেকে সমুদ্র দেখা যায় সেখানে গেল| সে ফিরে এসে বলল, “কই কিছু তো দেখতে পেলাম না|” এলিয় তাকে আবার দেখতে পাঠালেন| 44 পরপর সাত বার একই ঘটনা ঘটার পর সাতবারের বার সেই ভৃত্য এসে বলল, “মানুষের হাতের মুঠোর মতো ছোট্ট এক টুকরো মেঘ দেখলাম সমুদ্রের দিক থেকে আসছে|”এলিয় তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “যাও রাজা আহাবকে তাঁর রথ প্রস্তুত করে বাড়িতে য়েতে বলো কারণ এক্ষুনি রওনা না হলে ও বৃষ্টিতে আটকে যাবে|” 45 অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যেই গোটা আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গিয়ে বাতাস বইতে শুরু করলো এবং প্রবল বৃষ্টি শুরু হল| আহাব তাঁর রথে চড়ে য়িষ্রিযেলের দিকে রওনা হলেন| 46 প্রভুর শক্তি তখন এলিয়কে ভর করলো| এলিয় আঁট করে পোশাক বেঁধে আহাবের আগেই দৌড়ে য়িষ্রিযেলে পৌঁছে গেলেন|
1 রাজা আহাব রাণী ঈষেবলকে এলিয় যা যা করেছেন, য়ে ভাবে সমস্ত ভাববাদীদের তরবারি দিয়ে হত্যা করেছেন সবই বললেন| 2 ঈষেবল তখন এলিয়র কাছে দূত মারফত্ খবর পাঠালেন, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি আগামীকাল এসময়ের আগে তুমি য়ে ভাবে ঐ ভাববাদীদের হত্যা করেছ ঠিক সে ভাবেই তোমাকে হত্যা করব| আর যদি তা না পারি তাহলে য়েন দেবতারা আমায় হত্যা করেন|” 3 এলিয় যখন একথা শুনলেন তখন ভয়ে তিনি তাঁর প্রাণ বাঁচাতে ভৃত্যকে সঙ্গে নিয়ে যিহূদার বেরশেবাতে পালিয়ে গেলেন| তাঁর ভৃত্যকে বেরশেবাতে রেখে 4 এলিয় সারাদিন হেঁটে হেঁটে অবশেষে মরুভূমিতে গিয়ে পৌঁছলেন| সেখানে একটা কাঁটা ঝোপের তলায় বসে তিনি মৃত্যু প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু য়থেষ্ট হয়েছে| এবার আমাকে মরতে দাও| আমি আমার পূর্বপুরুষদের অপেক্ষা কোনো অংশেই ভালো নই|” 5 এরপর এলিয় সেই ঝোপের তলায় শুয়ে ঘুমিযে পড়লেন| এসময় এক দেবদূত এসে এলিয়কে স্পর্শ করে বলল, “ওঠো এলিয় খেযে নাও!” 6 এলিয় দেখতে পেলেন তাঁর পাশেই কযলার ওপরে এক খানা কেক বানানো আছে আর এক ঘড়া জল রাখা আছে| এলিয় তা খেযে জল পান করে আবার ঘুমিযে পড়লেন| 7 পরে আবার প্রভুর দূত ফিরে এসে তাঁকে বলল, “ওঠো এলিয়! কিছু খাও! সামনে লম্বা সফর, যদি তুমি খেযে গায়ে জোর না বাড়াও পাড়ি দিতে পারবে না|” 8 এলিয় তখন উঠে পানাহার করলেন| সেই খাবার এলিয়কে একটানা 40 দিন 40 রাত্রি হাঁটার মতো শক্তি জোগালো| হাঁটতে হাঁটতে তিনি ঈশ্বরের পর্বত নামে পরিচিত হোরেব পর্বতে গিয়ে পৌঁছলেন| 9 সেখানে একটি গুহার ভেতরে এলিয় রাত্রি বাস করলেন|সে সময় প্রভু এলিয়র সঙ্গে কথা বললেন, “এলিয় তুমি এখানে কেন?” 10 এলিয় উত্তর দিলেন, “প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, আমি সব সময় সাধ্য মতো তোমার সেবা করেছি| কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তোমার সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করে তোমার বেদী ধ্বংস করে ভাববাদীদের হত্যা করেছে| এখন আমিই একমাত্র জীবিত ভাববাদী আর তাই ওরা আমাকেও হত্যার চেষ্টা করছে|” 11 প্রভু তখন এলিয়কে বললেন, “যাও পর্বতে গিয়ে আমার সামনে দাঁড়াও| আমি ঐ জায়গা দিয়ে যাব|” তখন ঝোড়ো হাওযা এসে পর্বতটাকে ভেঙ্গে দ্বিখণ্ডিত করল, বড় বড় পাথরের চাঁই খসে পড়ল, কিন্তু সেই ঝড়ের মধ্যে প্রভু ছিলেন না| ঝড়ের পর হল ভূমিকম্প| কিন্তু সেই ভূমিকম্পও প্রভু বয়ং নন| 12 ভূমিকম্পের আগুন জ্বলে উঠল| কিন্তু আগুনের মধ্যেও প্রভু ছিলেন না| আগুন নিভিযে দেওয়া হল| একটি শান্ত, কোমল স্বর শোনা গেল| 13 এলিয় যখন স্বরটা শুনতে পেলেন তখন তিনি তাঁর শাল দিয়ে তাঁর মুখ ঢেকে দিলেন| তারপর তিনি গিয়ে গুহার প্রবেশ মুখে দাঁড়ালেন| একটি স্বর তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “এলিয়, তুমি এখানে কেন?” 14 এলিয় বললেন, “প্রভু, ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, আমি সব সময়ই আমার সাধ্য মতো তোমার সেবা করে এসেছি কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তোমার সঙ্গে তাদের চুক্তিভঙ্গ করেছে| তারা তোমার পূজোর বেদী ধ্বংস করে সমস্ত ভাববাদীদের হত্যা করেছে| এখন আমিই একমাত্র জীবিত আছি| আর ওরা আমাকে হত্যার চেষ্টা করছে|” 15 প্রভু বললেন, “যাও দম্মেশকের পাশের মরুভূমির দিকে য়ে রাস্তা যাচ্ছে সেটা ধরে দম্মেশকে গিয়ে হসায়েলকে অরামের রাজপদে অভিষিক্ত করো| 16 তারপর নিম্শির পুত্র য়েহূকে ইস্রায়েলের রাজপদে অভিষেক করো| আর আবেলমহোলার শাফটের পুত্র ইলীশায়কেও অভিষেক করো| সে ভাববাদী হিসেবে তোমার জায়গা নেবে| 17 হসায়েল বহু খারাপ লোককে হত্যা করবে| হসায়েলের হাত থেকে যারা বেঁচে যাবে তাদের য়েহূ হত্যা করবে| আর য়েহূর তরবারি থেকেও যদি কেউ নিস্তার পেয়ে যায় তাকে ইলীশায় হত্যা করবে| 18 এলিয় ইস্রায়েলে তুমিই একমাত্র একনিষ্ঠ ভাবে আমার সেবা করো নি| সেখানে আরো 7,000 লোক আছে যারা কখনও বাল মূর্ত্তির কাছে মাথা নত করে নি এবং এরা কখনও বাল মূর্ত্তি চুম্বন করে নি| 19 এলিয় তখন শাফটের পুত্র ইলীশায়কে খুঁজতে বেরোলেন| ইলীশায় তখন 12 বিঘা জমিতে হাল দিচ্ছিলেন| এলিয় যখন এলেন তখন ইলীশায় শেষ এক বিঘা জমিতে হাল দিচ্ছিলেন| এলিয় গিয়ে ইলীশায়ের গায়ে নিজের আনুষ্ঠানিক পোশাক পরিযে দিলেন| 20 ইলীশায় ষাঁড়কে ছেড়ে রেখে এলিয়র পেছনে ছুটে এসে বললেন, “আমাকে অনুমতি দিন, আমি একবার গিয়ে আমার মাকে আদর করে আসি এবং পিতার কাছ থেকে বিদায নিয়ে আসি| তারপর আমি আপনার সঙ্গে যাবো|”এলিয় উত্তর দিল, “বেশ, যাও! আমি তোমাকে বাধা দেব না|” 21 ইলীশায় তখন বাড়িতে গিয়ে আত্মীয স্বজনের সঙ্গে দারুণ খাওয়া-দাওয়া করলেন| তাঁর গরুগুলোকে মেরে য়োয়ালের কাঠ বালিয়ে মাংস সেদ্ধ করে লোকদের খাওয়ালেন এবং নিজেও খেলেন| তারপর ইলীশায় এলিয়কে অনুসরণ করলেন এবং তাঁর পরিচর্য়্য়া করতে লাগলেন|
1 বিন্হদদ ছিলেন অরামের রাজা| তিনি তাঁর সেনাবাহিনী এক জায়গায় জড়ো করলেন| সেখানে তাঁর সঙ্গে আরো 32 জন রাজা য়োগদান করলেন| তাঁদের সঙ্গে ঘোড়া ও রথ ছিল| তারপর তারা সকলে মিলে শমরিয় আক্রমণ করে শমরিয় শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন| 2 রাজা বিন্হদদ ইস্রায়েলের রাজা আহাবের কাছে শহরে বার্তাবাহক পাঠালেন| 3 তিনি বললেন, “তুমি আমাকে তোমার সোনা, রূপো, স্ত্রী, পুত্রকন্যা সবকিছু সমর্পণ করো|” 4 ইস্রায়েলের রাজা উত্তর দিলেন, “মহারাজ আমি আপনার আনুগত্য স্বীকার করলাম| আমার যা কিছু আছে এখন সবই আপনার হল| 5 বার্তাবাহকরা ফিরে এসে আহাবকে জানালো বিন্হদদ বলেছেন, “আমি তোমাকে আগেই তোমার সোনা, রূপো, স্ত্রী পুত্রকন্যা সবাই আমায় দিয়ে দিতে বলেছিলাম| 6 আগামীকাল আমার লোকরা গিয়ে তোমার ও তোমার কর্মচারীদের বাড়ি তল্লাশি করবে| তারা আমার কাছে নিয়ে আসার জন্য যাবতীয় মূল্যবান সম্পদ নিয়ে নেবে|”‘ 7 আহাব তখন দেশের সমস্ত প্রবীণদের এক বৈঠক ডাকলেন| আহাব বললেন, “দেখুন, বিন্হদদ একটা গোলমাল করবার চেষ্টায আছে| প্রথমে ও আমার কাছে আমার স্ত্রী, পুত্রকন্যা, সোনা রূপো সবকিছু চেয়েছিল| আমি সে সবই ওকে দিতে রাজী হয়েছিলাম| কিন্তু এখন ও সব কিছুই নিয়ে য়েতে চাইছে|” 8 সমস্ত প্রবীণরা বললেন, “ওর কথা শোনার দরকার নেই| ও যা বলছে তা আপনি কোনো মতেই করবেন না|” 9 আহাব তখন বিন্হদদকে খবর পাঠালেন, “প্রথমে আপনি যা বলেছিলেন আমি তাতে সম্মত আছি, কিন্তু আপনার দ্বিতীয় নির্দেশ মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়|”বিন্হদদের দূতরা এ খবর রাজার কাছে নিয়ে গেল| 10 তারপর তারা বিন্হদদের কাছ থেকে এসে জানালো, “আমি শমরিয় শহরকে ধ্বংস করে ধূলোয় মিশিয়ে দেব| আমি প্রতিজ্ঞা করছি য়ে এই শহর থেকে আমার লোকদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার মতো এক টুকরো স্মারক আমি অবশিষ্ট রাখবো না| যদি এ কাজ করতে না পারি আমার ঈশ্বর য়েন আমাকেই ধ্বংস করেন|” 11 রাজা আহাব জবাব দিলেন, “যাও বিন্হদদকে গিয়ে বলো, যুদ্ধে যাওয়ার আগে বর্ম য়ে পরে তার যুদ্ধ করে এসে য়ে বর্ম খোলে তার মতো গলাবাজি সাজে না|” 12 বিন্হদদ তখন তাঁবুতে বসে অন্যান্য রাজাদের সঙ্গে দ্রাক্ষারস পান করছিলেন| সে সময় বার্তাবাহকরা রাজা আহাবের কাছ থেকে ফিরে এসে তাঁকে এই খবর দিতে তিনি তাঁর সেনাবাহিনীকে শহর আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন| তখন তাঁর লোকরা যুদ্ধ করবার জন্য য়ে যার নিজের জায়গায় সরে গেল| 13 সে সময় এক ভাববাদী রাজা আহাবকে গিয়ে বলল, “প্রভু বলেছেন, ‘তুমি কি ঐ সুবিশাল সেনাবাহিনী দেখতে পাচ্ছো? আমি বয়ং আজ তোমায় ঐ বাহিনীকে যুদ্ধে হারাতে সাহায্য করবো| তাহলেই তুমি বুঝবে আমিই প্রভু|” 14 আহাব জিজ্ঞাসা করলেন, “ওদের যুদ্ধে হারানোর জন্য আপনি কাকে ব্যবহার করবেন?”সেই ভাববাদী উত্তর দিল, “প্রভু বলেছেন, ‘সরকারী রাজকর্মচারীদের তরুণ সহকারীদের আমি ব্যবহার করবো|”‘তখন রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “মূল সেনাবাহিনীর সেনাপতিত্ব কে করবে?”ভাববাদী উত্তর দিল, “আপনি|” 15 আহাব তখন সরকারী কর্মচারীদের তরুণ সহকারীদের জড়ো করলেন| সব মিলিয়ে এরা সংখ্যায় ছিল 232 জন| তারপর রাজা ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীকে ডেকে পাঠালেন| সব মিলিয়ে সেখানে 7,000 জন ছিল| 16 দুপুর বেলায় যখন বিন্হদদ ও অন্যান্য 32 জন রাজা দ্রাক্ষারস পান করে তাঁবুতে বেহুঁশ হয়ে পড়েছিলেন সে সময়ে রাজা আহাব আক্রমণ শুরু করলেন| 17 তরুণ সহকারীরাই প্রথম আক্রমণ করলো| রাজা বিন্হদদের লোকরা তাঁকে জানাল, শমরিয়া থেকে সেনারা যুদ্ধ করতে বেরিয়েছে| 18 বিন্হদদ বললেন, “হতে পারে ওরা যুদ্ধ করতে আসছে অথবা ওরা হয়তো শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আসছে| ওদের জীবন্ত ধরে ফেলো|” 19 রাজা আহাবের তরুণ য়োদ্ধারা আক্রমণের সামনের দিকে ছিল আর ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী ওদের অনুসরণ করছিল| 20 ইস্রায়েলের সমস্ত ব্যক্তি তাদের সামনে যাকে পেলো হত্যা করল| তখন অরামের লোকরা পালাতে শুরু করল| ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী তাদের ধাওযা করলো| রাজা বিন্হদদ কোনো মতে রথের একটা ঘোড়ায় চেপে পালালেন| 21 রাজা আহাব সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে অরামের সেনাবাহিনীর সমস্ত ঘোড়া ও রথ কেড়ে নিলেন| রাজা আহব এভাবেই অরামীয় সেনাবাহিনীকে চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত করেছিলেন| 22 তারপর সেই ভাববাদী রাজা আহাবের কাছে গিয়ে বললেন, “আগামী বসন্তে অরামের রাজা বিন্হদদ আবার আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে ফিরে আসবে| এখন ফিরে গিয়ে আপনি আপনার সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করুন আর তার বিরুদ্ধে রাজ্য রক্ষা করার জন্য সতর্ক ভাবে পরিকল্পনা করুন|” 23 রাজা বিন্হদদের রাজকর্মচারীরা তাঁকে বললেন, “ইস্রায়েলের দেবতারা আসলে পর্বতের দেবতা| আর আমরা পর্বতে গিয়ে যুদ্ধ করেছি তাই ইস্রায়েলের লোকরা জিতে গিয়েছে| ওদের সঙ্গে এবার সমতল ভূমিতে যুদ্ধ করা যাক, তাহলে আমরা জিতে যাবো| 24 আপনি ঐ 32 জন রাজাকে সেনাবাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব করতে না দিয়ে সেনাপতিদের সেনাবাহিনী পরিচালনা করতে দিন| 25 “প্রথমে আপনি ধ্বংস হয়ে যাওয়া সেনাবাহিনীর মতো আরেকটা বাহিনী গড়ার জন্য সেনা জড়ো করুন| আগের সেনাবাহিনীর মতো ঘোড়া ও রথ জোগাড় করুন| তারপরে চলুন ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে সমতল ভূমিতে গিয়ে যুদ্ধ করি| তাহলেই আমরা জিতবো|” বিন্হদদ তাদের পরামর্শ অনুযায়ীকাজ করলেন| 26 বসন্তকাল এলে বিন্হদদ অরামের লোকদের জড়ো করে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অফেকে গেলেন| 27 ইস্রায়েলীয়রাও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল| তারাও অরামের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল এবং তাদের তাঁবূর ঠিক উল্টোদিকে নিজেদের তাঁবু গাড়ল| শত্রুপক্ষের তুলনায় ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীকে দুটো ছোট ছোট ছাগলের পালের মতো দেখাচ্ছিল| এদিকে অরামীয় সেনারা গোটা মাঠ ছেযে ফেললো| 28 ঈশ্বরের এক জন লোক তখন এসে রাজা আহাবকে বলল, “প্রভু বলেছেন, ‘অরামীয়দের ধারণা আমি কেবলমাত্র পর্বতেরই প্রভু ও ঈশ্বর, সমতল ভূমির নয়| তাই আমি এবার তোমায় এই বিরাট সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করতে সাহায্য করব| তাহলে তুমি বুঝবে আমি সর্বশক্তিমান প্রভু|”‘ 29 দুই পক্ষের সেনাবাহিনী মুখোমুখি তাঁবু গেড়ে আরো সাতদিন বসে থাকল| সাত দিনের দিন যুদ্ধ শুরু হল| এক দিনেই ইস্রায়েলীয়রা অরামীয়দের 1,00,000 সৈন্যকে হত্যা করল| 30 যারা বেঁচে থাকল তারা পালিয়ে অফেক শহরে আশ্রয় নিল| কিন্তু শহরের দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ায সেই সেনাবাহিনীর আরো 27,000 সৈন্যের মৃত্যু হল| বিন্হদদ ও অফেকে পালিয়ে গিয়ে একটি বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন| 31 তাঁর ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “আমরা শুনেছি ইস্রায়েলের রাজারা দয়ালু হন| চলুন আমরা চটের পোশাক পরে মাথায় দড়ি দিয়ে ইস্রায়েলের রাজার সামনে যাই| তাহলে হয়তো তিনি আমাদের প্রাণে মারবেন না|” 32 তারা তখন সকলে চটের পোশার পরে মাথায় দড়ি দিয়ে ইস্রায়েলের রাজার সামনে এসে বলল, “আপনার ভৃত্য বিন্হদদ প্রাণ ভিক্ষা চাইতে এসেছে|”আহাব বললেন, “বিন্হদদ এখনও বেঁচে আছে, সে তো আমার ভাইযের মত|” 33 বিন্হদদের লোকরা চেয়েছিল রাজা আহাব এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দিন যাতে বোঝা যায় তিনি রাজা বিন্হদদকে হত্যা করবেন না| আহাবের মুখে ‘ভাই’ সম্বোধন শুনে বিন্হদদের পরামর্শদাতারা সঙ্গে সঙ্গে বলল, “হ্যাঁ, মহারাজ বিন্হদদ আপনার ভাই হলেন|”আহাব বললেন, “তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো|” বিন্হদদ রাজা আহাবের কাছে এলে আহাব তাঁকে তাঁর সঙ্গে রথে চড়তে বললেন| 34 বিন্হদদ তাঁকে বললেন, “আহাব, আমার পিতা তোমার পিতার কাছ থেকে য়ে সমস্ত শহর নিয়েছিলেন আমি সেই সমস্তই তোমাকে ফেরত্ দেব| আর তাছাড়া তুমি দম্মেশকে দোকান বসাতে পার য়েমন আমার পিতা শমরিয়ায বসিযে ছিলেন|”আহাব উত্তর দিলেন, “তুমি যদি এই প্রতিশ্রুতি দাও তাহলে আমি তোমাকে মুক্ত করে দিচ্ছি|” তারপর এই দুই রাজার মধ্যে শান্তি চুক্তি সাক্ষরিত হলে রাজা আহাব রাজা বিন্হদদকে মুক্তি দিলেন| 35 এক ভাববাদী আরেক ভাববাদীকে আঘাত করতে বললেন| তিনি এরকম বলেছিলেন কারণ প্রভু তাঁকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন| কিন্তু অন্য ভাববাদী তাকে আঘাত করতে রাজী হলেন না| 36 তখন সেই প্রথম ভাববাদী বললেন, “তুমি প্রভুর আদেশ অমান্য করেছ, তাই এখান থেকে যাওয়ার পথে এক সিংহের হাতে তোমার মৃত্যু হবে|” দ্বিতীয় ভাববাদী সে জায়গা থেকে যাওয়ার সময় একটা সিংহ এসে তাকে হত্যা করল| 37 প্রথম ভাববাদী তখন আরেক ব্যক্তির কাছে গিয়ে তাকে আঘাত করতে লাগল|এই ব্যক্তি আঘাত করে ভাববাদীকে আহত করলে, 38 ভাববাদী একটি কাপড়ে মুখ ঢাকলেন| এর ফলে কেউ সেই ভাববাদীকে চিনতে পারছিল না| সেই ভাববাদী পথের ধারে রাজার যাওয়ার অপেক্ষায বসে থাকলেন| 39 রাজা এলে সেই ভাববাদী তাঁকে বললেন, “আমি যখন যুদ্ধে গিয়েছিলাম তখন আমাদের দলের একজন এক শত্রু সৈন্যকে নিয়ে এসে আমাকে তাকে পাহারা দিতে বলে| সে বলেছিল, ‘একে পাহারা দাও| যদি ও পালিয়ে যায় তাহলে তোমাকে ওর বদলে প্রাণ দিতে হবে, আর না হলে 75 পাউণ্ড রূপো জরিমানা দিতে হবে|’ 40 কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত: আমি তখন অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় শত্রু সেনাটি পালিয়ে যায়|”ইস্রায়েলের রাজা উত্তর দিলেন, “তুমি বলছো তুমি বিপক্ষ দলীয এক সেনাকে পালিয়ে য়েতে দেওয়ার দোষে দোষী| এবার কি হবে তা তো তুমি জানোই| ঐ সেনাটির কথা মতোই তোমায় কাজ করতে হবে|” 41 তখন সেই ভাববাদী তাঁর মুখ থেকে কাপড় সরালে ইস্রায়েলের রাজা দেখে বুঝতে পারলেন য়ে তিনি এক জন ভাববাদী| 42 সেই ভাববাদী রাজাকে বললেন, “প্রভু বলেছেন, ‘আমি যাকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলাম তুমি তাকে মুক্তি দিয়েছ| তাই তোমায় তার জায়গা নিতে হবে| তোমার মৃত্যু হবে| আর তোমার প্রজারা তোমার শত্রুর জায়গা নেবে এবং তারাও মারা যাবে|”‘ 43 রাজা তখন চিন্তিত ও দুঃখিত মনে শমরিয়ায তাঁর বাড়িতে ফিরে এলেন|
1 শমরিয়ায রাজা আহাবের রাজপ্রাসাদের কাছেই একটা দ্রাক্ষাক্ষেত ছিল| য়িষ্রিযেলে নাবোত নামে এক ব্যক্তি ছিল এই ক্ষেতের মালিক| 2 এক দিন রাজা আহাব নাবোতকে বললেন, “আমাকে তোমার ক্ষেতটা দিয়ে দাও, আমি সব্জির বাগান করবো| তোমার ক্ষেতটা আমার রাজপ্রাসাদের কাছে| আমি তোমাকে এর বদলে আরো ভাল দ্রাক্ষা ক্ষেত দেব| কিংবা তুমি যদি চাও আমি ক্ষেতটা কিনেও নিতে পারি|” 3 নাবোত বলল, “এ আমার বংশের জমি| আমি আপনাকে কোনো মতেই দিতে পারব না|” 4 নাবোতের কথায় ক্রুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ আহাব তখন বাড়ি ফিরে গেলেন| য়িষ্রিযেলের এই ব্যক্তির কথা তিনি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না| নাবোত বলল য়ে সে তার পরিবারের জমি দেবে না| আহাব বিছানায শুয়ে পড়লেন, মুখ ঘুরিযে রাখলেন এবং খেতে অস্বীকার করলেন| 5 আহাবের স্ত্রী ঈষেবল গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কি হয়েছে? খেলে না কেন?” 6 আহাব বললেন, “আমি য়িষ্রিযেলের নাবোতকে ওর জমিটা আমায় দিয়ে দিতে বলেছিলাম| তার বদলে ওকে পুরো দাম দিতে বা আরেকটা জমি দিতে আমি রাজি আছি| কিন্তু নাবোত আমাকে ওর জমি দেবে না বলে দিয়েছে|” 7 ঈষেবল বলল, “তুমি ইস্রায়েলের রাজা| বিছানা ছেড়ে উঠে কিছু খাও, দেখবে তাহলেই অনেক ভাল লাগবে| নাবোতের জমি আমি তোমায় দেব|” 8 এরপর ঈষেবরল আহাবের সীলমোহর দিয়ে তাঁর বকলমে কয়েকটা চিঠি লিখে নাবোত য়ে শহরে বাস করত সেখানকার প্রবীণদের পাঠিয়ে দিলেন| 9 ঈষেবল লিখলেন:একটি উপবাসের দিন ঘোষণা করুন য়েদিন কেউ কোনো খাওয়া-দাওয়া করবে না| তারপর শহরের সমস্ত লোককে একটা বৈঠকে ডাকুন| সেখানে আমরা নাবোতের সম্পর্কে আলোচনা করব| 10 কিছু লোককে জোগাড় করুন যারা নাবোতের নামে মিথ্যা কথা বলবে| তারা বলবে তারা নাবোতকে রাজা ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুনেছে| এরপর নাবোতকে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলুন| 11 য়িষ্রিযেলের প্রবীণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এই নির্দেশ পালন করলেন| 12 তারা একটি উপবাসের দিনের কথা ঘোষণা করলেন য়েদিন কেউ কিছু খেতে পারবে না| সেদিন তাঁরা সমস্ত লোকদের নিয়ে এক বৈঠক ডাকলেন| তারা সমস্ত লোকের সামনে নাবোতকে একটি বিশেষ জায়গায় স্থাপিত করলেন| নাবোতকে সেখানে লোকদের সামনে কাঠগড়ায দাঁড় করানোর পর 13 দুজন লোক বলল, তারা নাবোতকে রাজা ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুনেছে| তখন লোকরা নাবোতকে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে মেরে ফেলল| 14 তারপর নেতারা ঈষেবলকে খবর পাঠালেন, “নাবোতকে হত্যা করা হয়েছে|” 15 ঈষেবল যখন এখবর পেলেন তিনি আহাবকে বললেন, “নাবোত মারা গিয়েছে| তুমি য়ে ক্ষেতটা চেয়েছিলে, তা এবার নিয়ে নিতে পার|” 16 আহাব তখন গিয়ে সেই দ্রাক্ষার ক্ষেত নিজের জন্য দখল করলেন| 17 এ সময় প্রভু তিশ্রের ভাববাদী এলিয়কে শমরিয়ায নাবোতের দ্রাক্ষার ক্ষেতে গিয়ে আহাবের সঙ্গে দেখা করতে নির্দেশ দিলেন| 18 তিনি বললেন, “আহাব ঐ ক্ষেত নিজের জন্য দখল করতে গিয়েছেন| ওকে গিয়ে বল, ‘আহাব তুমি নাবোতকে হত্যা করে এখন ওর জমি দখল করছ| তাই আমি তোমায় শাপ দিলাম য়ে জায়গায় নাবোতের মৃত্যু হয়েছে সেই একই জায়গায় তোমারও মৃত্যু হবে| য়েসব কুকুর নাবোতের রক্ত চেটে খেযেছে তারা ঐ একই জায়গায় তোমারও রক্ত চেটে খাবে|”‘ 19 20 এলিয় তখন আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| আহাব এলিয়কে দেখতে পেয়ে বললেন, “তুমি আবার আমার পিছু নিয়েছ| তুমি তো সব সময়ই আমার বিরোধিতা করো|”এলিয় উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আমি আবার তোমাকে খুঁজে বের করেছি| তুমি আজীবন প্রভুর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করে কাটালে| 21 তাই প্রভু তোমাকে জানিয়েছেন, ‘আমি তোমায় ধ্বংস করব| আমি তোমাকে ও তোমার পরিবারের সমস্ত পুরুষকে হত্যা করব| 22 তোমার পরিবারের দশাও নবাটের পুত্র যারবিয়ামের পরিবারের মতো হবে| কিংবা রাজা বাশার পরিবারের মতো| এই দুই পরিবারই পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে| আমি একাজ করব কারণ আমি তোমার ব্যবহারে ক্রুদ্ধ হয়েছি| তুমি ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ|’ 23 প্রভু আরো বললেন, ‘কুকুররা তোমার স্ত্রী ঈষেবলের দেহ য়িষ্রিযেল শহরের পথে ছিঁড়ে খাবে| 24 তোমার পরিবারের য়ে সমস্ত লোকের শহরে মৃত্যু হবে তাদের মৃতদেহ কুকুর খাবে আর মাঠেঘাটে যারা মারা যাবে তাদের মৃতদেহ চিল শকুনিতে ঠোকরাবে|”‘ 25 5আহাবের মতো এতো বেশী অপরাধ বা পাপ আগে কেউ করেন নি| তাঁর স্ত্রী ঈষেবলই তাঁকে এসব করিযেছিলেন| 26 আহাব ইমোরীয়দের মতোই কাঠের মূর্ত্তি পূজা করার মতো জঘন্য পাপাচারণ করেছিলেন| এই অপরাধের জন্যই প্রভু ইমোরীয়দের ভূখণ্ড নিয়ে তা ইস্রায়েলীয়দের দিয়েছিলেন| 27 এলিয়র কথা শেষ হলে আহাবের খুবই দুঃখ হল| তিনি তাঁর শোকপ্রকাশের জন্য পরিধেয বস্ত্র ছিঁড়ে ফেললেন| তারপর শোকপ্রকাশের পোশাক গায়ে দিলেন| খাওয়া-দাওয়া করে দুঃখিত ও শোকসন্তপ্ত আহাব ঐ পোশাকেই ঘুমোতে গেলেন| 28 প্রভু তখন ভাববাদী এলিয়কে বললেন, 29 ”আমি দেখতে পাচ্ছি আহাব আমার সামনে বিনীত হয়েছে| তাই আমি ওর জীবদ্দশায় কোনো সংকটের সৃষ্টি না করে ওর ছেলে রাজা না হওয়া পর্য়ন্ত অপেক্ষা করব| তারপর আমি আহাবের বংশের ওপর বিপদ ঘনিয়ে তুলব|”
1 পরবর্তী দু বছর ইস্রায়েল ও অরামের মধ্যে শান্তি বজায় ছিল| 2 তারপর তৃতীয় বছরের মাথায় যিহূদার রাজা যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| 3 এসময় আহাব তাঁর রাজকর্মচারীদের বললেন, “মনে আছে অরামের রাজা গিলিয়দের রামোত্ আমাদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন? রামোত্ ফিরিযে নেবার জন্য আমরা কিছু করিনি কেন? রামোত্ আমাদেরই থাকা উচিত্|” 4 আহাব তখন রাজা যিহোশাফটকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি অরামের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের সঙ্গে রামোতে য়োগ দেবেন?”যিহোশাফট বললেন, “অবশ্যই| আমার সেনাবাহিনী ও ঘোড়া আপনার সৈন্যদলের সঙ্গে য়োগ দেবার জন্য প্রস্তুত| 5 কিন্তু প্রথমে এ বিষয়ে আমরা প্রভুর পরামর্শ নেব|” 6 তখন আহাব ভাববাদীদের এক বৈঠক ডাকলেন| সেই বৈঠকে প্রায় 400 ভাববাদী য়োগ দিলেন| আহাব তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি রামোতে অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, নাকি আমি উপযুক্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করব?”ভাববাদীরা বললনে, “আপনি এখনই গিয়ে যুদ্ধ করুন| প্রভু আপনার সহায় হয়ে আপনাকে জিততে সাহায্য করবেন|” 7 কিন্তু যিহোশাফট তাদের বললেন, “এখানে কি প্রভুর অন্য কোন ভাববাদী উপস্থিত আছেন? তাহলে আমাদের তাঁকেও ঈশ্বরের মতামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা উচিত্|” 8 রাজা আহাব বললেন, “য়িম্লের পুত্র মীখায় নামে ভাববাদী এখানে আছেন| আমি তাকে পছন্দ করি না কারণ যখনই সে প্রভুর কথা বলে কখনও আমার সম্পর্কে ভালো কোনো কথা বলে না|”যিহোশাফট বললেন, “মহারাজ আহাব আপনার মুখে একথা শোভা পায না|” 9 তখন রাজা আহাব রাজকর্মচারীদের এক জনকে গিয়ে মীখায়কে খুঁজে বের করতে বললেন| 10 সে সময় দুজন রাজাই তাঁদের রাজকীয পরিচ্ছদ পরেছিলেন| তাঁরা শমরিয়ায ঢোকার দরজার কাছে বিচার কক্ষে রাজ সিংহাসনে বসেছিলেন| সমস্ত ভাববাদীরা তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে ভাববাণী করছিলেন| 11 সেখানে কনানীর পুত্র সিদিকিয় নামে এক ভাববাদী ছিলেন| সিদিকিয় কিছু লোহার শিং বানিয়ে আহাবকে বললেন, “প্রভু বলেছেন, ‘অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তুমি এই শিংগুলো ব্যবহার করলে ওদের যুদ্ধে হারাতে ও ধ্বংস করতে পারবে|”‘ 12 অন্য সমস্ত ভাববাদীরাও সিদিকিয়র কথার সঙ্গে একমত হলেন| ভাববাদীরা বললেন, “আপনার সেনাবাহিনীর এবার যাত্রা শুরু করা উচিত্| রামোতে প্রভুর সহায়তায আপনার সেনাবাহিনী অরামের সৈন্য দলের বিরুদ্ধে অবশ্যই জয়লাভ করবে|” 13 এসব যখন হচ্ছিল, য়ে রাজকর্মচারী মীখায়ের খোঁজে গিয়েছিল সে মীখায়কে খুঁজে বের করে বলল, “দেখ সমস্ত ভাববাদীরাই বলেছেন মহারাজ যুদ্ধে জয়লাভ করবেন| আমি তোমাকে আগেই বলে দিচ্ছি, সে কথায় সায় দেওয়াই কিন্তু সব চেয়ে নিরাপদ|” 14 কিন্তু মীখায় বলল, “না! আমি প্রতিজ্ঞা করেছি য়ে ঐশ্বরিক শক্তির বলে প্রভু আমায় দিয়ে যা বলাবেন আমি তাই বলব|” 15 মীখায় তখন গিয়ে রাজা আহাবের সামনে দাঁড়ালে রাজা তাঁকে প্রশ্ন করলেন, “মীখায় আমি ও রাজা যিহোশাফট কি সম্মিলিত সেনাবাহিনী নিয়ে এখন রামোতে অরামের সৈন্যদলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করতে পারি?”মীখায় বলল, “নিশ্চয়ই! আপনারা দুজনে গিয়ে এখন যুদ্ধ করলে, প্রভু আপনাদের জিততে সাহায্য করবেন|” 16 আহাব বললেন, “মীখায় আপনি মোটেই দৈববাণী করছেন না| আপনি নিজের কথা বলছেন| আমাকে সত্যি কথা বলুন| আপনাকে কত বার বলবো? আপনি আমাকে প্রভুর অভিমত জানান|” 17 অগত্যা মীখায় বলল, “আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, কি ঘটতে চলেছে| ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী পরিচালনার য়োগ্য লোকের অভাবে এক পাল মেষের মতো ছড়িয়ে পড়বে| প্রভু বলছেন, ‘এদের কোনো য়োগ্য সেনাপতি নেই| যুদ্ধ না করে এদের বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত্|”‘ 18 আহাব তখন যিহোশাফটকে বললেন, “দেখলেন! আপনাকে আগেই বলেছিলাম| এই ভাববাদী আমার সম্পর্কে কখনও ভাল কথা বলে না| এমন কথা বলে যা আমি শুনতে চাই না|” 19 কিন্তু মীখায় তখন প্রভুর অভিমত ব্যক্ত করে বলে চলেছে, “শোনো! আমি স্বচক্ষে প্রভুকে তাঁর সিংহাসনে বসে থাকতে দেখতে পাচ্ছি| দূতরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে| 20 প্রভু বলেছেন, ‘তোমাদের দূতদের মধ্যে কেউ কি রাজা আহাবকে প্রলোভিত করতে পারবে? আমি চাই আহাব রামোতে অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন| তাহলে ও নিহত হবে|’ দূতরা কি করবে সে বিষয়ে সহমত হতে পারলো না| 21 শেষ পর্য়ন্ত এক দূত বলল, ‘আমি পারব রাজা আহাবকে প্রভাবিত করতে|’ 22 প্রভু প্রশ্ন করলেন, ‘কিভাবে তুমি এই কাজ করবে?’ দূত উত্তর দিলেন, ‘আমি যাব ও সমস্ত ভাববাদীদের মুখে মিথ্যাবাদী আত্মা হব|’ তখন প্রভু বললনে, “উত্তম প্রস্তাব! যাও, গিয়ে রাজা আহাবের ওপর তোমার চাতুরী দেখাও| তুমি সফল হবে|”‘ 23 মীখায় তার গল্প শেষ করে বলল, “তার মানে এখানেও ঠিক একই কাণ্ডখানাই ঘটেছে| প্রভু আপনার ভাববাদীদের দিয়ে আপনার কাছে মিথ্যে কথা বলিযেছেন| প্রভু নিজেই আপনার ওপর দুর্য়োগ ঘনিয়ে তোলার ব্যবস্থা করেছেন|” 24 তখন ভাববাদী সিদিকিয় গিয়ে মীখায়ের মুখে আঘাত করে বলল, “তুমি কি সত্যিই বিশ্বাস করো য়ে ঈশ্বরের ক্ষমতা আমাকে ছেড়ে গেছে এবং প্রভু এখন তোমার মুখ দিয়ে কথা বলছেন?” 25 মীখায় উত্তর দিল, “শীঘ্রই বিপদ ঘনিয়ে আসছে| তুমি তখন গিয়ে একটা ছোট্ট ঘরে লুকিয়ে বুঝতে পারবে, আমিই সত্যি কথা বলেছি|” 26 তখন রাজা আহাব তাঁর এক কর্মচারীকে, মীখায়কে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়ে বললেন, “ওকে গ্রেপ্তার করে আমোনের শাসনকর্তা রাজপুত্র যোয়াশের কাছে নিয়ে যাও| 27 ওদের বললেন মীখায়কে কারাগারে বন্ধ করে রাখতে| জল আর রুটি ছাড়া য়েন ওকে আর কিছু খেতে না দেওয়া হয়| আমি যুদ্ধ থেকে বাড়ি ফিরে না আসা পর্য়ন্ত ওকে এভাবে আটকে রেখো|” 28 মীখায় তখন চিত্কার করে বলল, “আমি কি বলেছি তোমরা সকলেই শুনেছ| রাজা আহাব তুমি যদি যুদ্ধ থেকে বেঁচে ফিরে আস তাহলে সবাই জানবে য়ে ঈশ্বর কখনোই আমার মধ্যে দিয়ে কথা বলেন নি|” 29 তারপরে রাজা আহাব ও রাজা যিহোশাফট রামোতে অরামের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন| 30 তারপর রাজা আহাব, রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমরা যুদ্ধের জন্য তৈরী হব| আমি এমন পোশাক পরবো যাতে বোঝা না যায় য়ে আমি রাজা| কিন্তু আপনি আপনার রাজকীয পোশাক পরুন, যাতে বোঝা যায় আপনি রাজা|” তারপর ইস্রায়েলের রাজা সাধারণ পোশাকে তিনি রাজা নন এভাবে যুদ্ধ শুরু করলেন| 31 অরামের রাজার রথবাহিনীর 32 জন সেনাপতি ছিল| রাজা এই 32 জন সেনাপতিদের ইস্রায়েলের রাজাকে খুঁজে বের করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন| তিনি তাদের রাজাকে হত্যা করতে বললেন| 32 যুদ্ধের সময় এই সব সেনাপতিরা রাজা যিহোশাফটকে দেখে ভাবলেন তিনিই বুঝি ইস্রায়েলের রাজা| তারা তখন যিহোশাফটকে হত্যা করতে গেলে তিনি চেঁচাতে শুরু করলেন| 33 সেনাপতিরা দেখল তিনি রাজা আহাব নন, তাই তাঁরা তাঁকে হত্যা করল না| 34 কিন্তু এক জন সেনা কোনো কিছু লক্ষ্য না করেই বাতাসে একটা তীর ছুঁড়লো, সেই তীর গিয়ে ইস্রায়েলের রাজা আহাবের গায়ে লাগল| তীরটা একটা ছোট্ট জায়গায় বর্মের না ঢাকা অংশে গিয়ে লেগেছিল| রাজা আহাব তখন তাঁর রথের সারথীকে বললেন, “আমার গায়ে তীর লেগেছে| যুদ্ধক্ষেত্র থেকে রথ বের করে নিয়ে চল|” 35 এদিকে দুই সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে য়েতে লাগল| রাজা আহাব তাঁর রথে কাত হয়ে পড়ে অরামের সেনাবাহিনীর দিকে দেখছিলেন| তাঁর রক্ত গড়িযে পড়ে রথের তলা ভিজে গিয়েছিল| বিকেলের দিকে তিনি মারা গেলেন| 36 সূর্য়াস্তের সময় ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর সবাইকে তাদের নিজেদের শহরে ফিরে য়েতে বলা হল| 37 এই ভাবে রাজা আহাবের মৃত্যু হল| কিছু লোক তাঁর দেহ শমরিয়ায নিয়ে গেলেন, তাঁকে সেখানে কবর দেওয়া হল| 38 লোকরা শমরিয়ায একটা ডোবায রথ থেকে আহাবের রক্ত ধুয়ে পরিষ্কার করল| গণিকারা সেই জলে স্নান করল| কুকুররাও রথ থেকে আহাবের রক্ত চেটে চেটে খেল| প্রভু য়ে রকম বলেছিলেন সমস্ত ঘটনা ঠিক সেভাবেই ঘটল| 39 আহাব তাঁর শাসনকালে যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| এই গ্রন্থে আহাব কি ভাবে হাতির দাঁত দিয়ে তাঁর রাজপ্রাসাদ সাজিযে ছিলেন সে কথা ছাড়াও আহাবের বানানো শহরগুলির সম্পর্কেও লেখা আছে| 40 আহাবের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল| তাঁর পুত্র অহসিয় তাঁর পরে রাজা হলেন| 41 আহাবের ইস্রায়েলে রাজত্বের চতুর্থ বছরে যিহোশাফট যিহূদার রাজা হয়েছিলেন| যিহোশাফট ছিলেন আসার পুত্র| 42 পঁযত্রিশ বছর পরে যিহূদার রাজা হবার পর তিনি জেরুশালেমে 25 বছর রাজত্ব করেছিলেন| যিহোশাফটের মা ছিলেন শিল্হির কন্যা অসূবা| 43 যিহোশাফট তাঁর পিতার মতো সত্ পথে থেকে প্রভুর সমস্ত নির্দেশ মেনে চলেছিলেন| তবে তিনি বিধর্মী মূর্ত্তিগুলির উচ্চস্থানগুলো ভাঙ্গেন নি| লোকরা সে সব জায়গায় পশু বলি ছাড়াও ধূপধূনো দিত| 44 যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিলেন| 45 যিহোশাফট খুবই সাহসী ছিলেন এবং অনেক যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন| তিনি যা যা করেছিলেন, ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 46 য়ে সমস্ত নর-নারী গণিকাবৃত্তি অবলম্বন করত যিহোশাফট তাদের ধর্মস্থান ছেড়ে চলে য়েতে বাধ্য করেছিলেন| এই সমস্ত নর-নারী তাঁর পিতা আসার রাজত্ব কালে ঐসব ধর্মস্থানে ছিল| 47 এসময়ে ইদোমে কোনো রাজা ছিল না| যিহূদার রাজা সেখানকার শাসন কাজ চালনার জন্য একজন প্রাদেশিক শাসনকর্তাকে বেছে নিয়েছিলেন| 48 রাজা যিহোশাফট কিছু মালবাহী জাহাজ বানিয়েছিলেন| তিনি চেয়েছিলেন এই সমস্ত জাহাজ ওফীরে গিয়ে সেখান থেকে সোনা নিয়ে আসবে| কিন্তু ওফীরে যাবার আগেই দেশেরই বন্দরে ইত্সিযোন-গেবরে এই সব জাহাজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়| 49 ইস্রায়েলের রাজা অহসিয় তখন নিজের কিছু নাবিককে যিহোশাফটের জাহাজে তাঁর নাবিকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য পাঠাতে চেয়েছিলেন| কিন্তু যিহোশাফট অহসিয়ের এই সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিলেন| 50 যিহোশাফটের মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চির নিদ্রায় সমাধিস্থ করা হল| এরপর রাজা হলেন তাঁর পুত্র যিহোরাম| 51 যিহূদার রাজা যিহোশাফটের রাজত্বের 17 বছরে আহাবের পুত্র অহসিয় ইস্রায়েলের রাজা হয়েছিলেন| অহসিয় 2 বছর শমরিয়ায রাজত্ব করেছিলেন| 52 অহসিয় তাঁর পিতা আহাব, মাতা ঈষেবল ও নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতোই প্রভুর বিরুদ্ধে যাবতীয় পাপাচরণ করেন| এই সমস্ত শাসকরাই ইস্রায়েলকে আরো পাপের দিকে ঠেলে নিয়ে গিয়েছিলেন| 53 অহসিয় তাঁর পিতার মতোই বাল মূর্ত্তির পূজা করতেন| ফলে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, খুবই ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| এর আগে তিনি তাঁর পিতার ওপর য়ে রকম ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন, অহসিয়ের প্রতিও তিনি ঠিক সে রকমই ক্রুদ্ধ হন|
1 রাজা আহাবের মৃত্যুর পর, মোয়াব দেশটি ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল| 2 এক দিন, অহসিয় যখন শমরিয়ায় তাঁর বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি পড়ে গিয়ে নিজেকে জখম করেন| তিনি তখন তাঁর বার্তাবাহকদের ইএোণর বাল্-সবূবের যাজকদের কাছে জানতে পাঠালেন, জখম অবস্থা থেকে তিনি সুস্থ হতে পারবেন কি না| 3 প্রভুর দূতরা তিশ্বীয ভাব্বাদী এলিয়কে বললেন, “রাজা অহসিয় শমরিয়া থেকে কয়েক জন বার্তাবাহক পাঠিয়েছেন| ওঠ এবং যাও, তাদের সঙ্গে দেখা করে বলো, ‘ইস্রায়েলের কি কোন ঈশ্বর নেই য়ে তোমরা ইএোণর বাল্-সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করতে বার্তাবাহক পাঠিয়েছ? 4 রাজা অহসিয়কে বলো, য়েহেতু তুমি এরকম করেছ প্রভু বলেন, তুমি বিছানা ছেড়ে উঠতে পারবে না| তোমার মৃত্যু অনিবার্য়্য়!”‘ তারপর এলিয় গেলেন এবং অহসিয়র ভৃত্যদের একথা জানালেন| 5 বার্তাবাহকরা অহসিয়র কাছে ফিরে এল| তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “এ কি, তোমরা এতো তাড়াতাড়ি কি করে ফিরলে?” 6 তারা বলল, “এক ব্যক্তি এসে আমাদের বললেন, রাজার কাছে ফিরে গিয়ে, প্রভু কি বলেছেন সে কথা জানাও| প্রভু বললেন, ‘ইস্রায়েলের কি কোন ঈশ্বর নেই য়ে তুমি ইএোণর বাল্-সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করতে বার্তাবাহকদের পাঠিয়েছ? য়েহেতু তুমি একাজ করেছ, তুমি আর কখনো বিছানা ছেড়ে উঠতে পারবে না| তোমার মৃত্যু অনিবার্য়্য়!”‘ 7 অহসিয় তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “যার সঙ্গে তোমাদের দেখা হয়েছিল, য়ে এসব কথা বলেছে তাকে কি রকম দেখতে বলো তো?” 8 বার্তাবাহকরা অহসিয়কে উত্তর দিল, “এই লোকটা একটা রোমশ কোট পরেছিল আর ওর কোমরে একটা চামড়ার কটিবন্ধ ছিল|”তখন অহসিয় বললেন, “এ হল তিশ্বীয এলিযা!” 9 অহসিয় তখন 50 জন লোক সহ এক সেনাপতিকে এলিয়র কাছে পাঠালেন| এলিয় তখন এক পাহাড়ের চূড়ায় বসেছিলেন| সেই সেনাপতিটি এসে এলিয়কে বললো, “হে ঈশ্বরের লোক, ‘রাজা তোমাকে নীচে নেমে আসতে হুকুম দিয়েছেন|”‘ 10 এলিয় তাঁকে উত্তর দিলেন, “আমি যদি সত্যিই ঈশ্বরের লোক হই, তবে স্বর্গ থেকে আগুন নেমে আসুক এবং আপনাকে ও আপনার 50 জন লোককে ধ্বংস করুক!”অতএব স্বর্গ থেকে আগুন নেমে এলো এবং সেনাপতি ও তার 50 জন লোককে ভস্মীভূত করে দিল| 11 অহসিয় তখন 50 জন লোক দিয়ে আরো এক জন সেনাপতিকে এলিয়র কাছে পাঠালেন| সে এসে এলিয়কে বললো, “এই য়ে ঈশ্বরের লোক, ‘রাজা তোমায় তাড়াতাড়ি নীচে নেমে আসতে হুকুম দিয়েছেন!”‘ 12 এলিয় তার কথার উত্তরে বললেন, “বেশ তো, তোমার কথামতো আমি যদি ঈশ্বরের লোক হই, তাহলে স্বর্গ থেকে অগ্নি বৃষ্টি হয়ে তুমি আর তোমার লোক সকল ধ্বংস হোক!”কথা শেষ হতে না হতেই আকাশ থেকে ঈশ্বরের পাঠানো অগ্নিশিখা নেমে এসে সেই সেনাপতি আর তার 50 জন সেনাকে পুড়িয়ে ছাই করে দিল| 13 অহসিয় তখন আবার তৃতীয় বার 50 জন সৈন্য দিয়ে আরেক সেনাপতিকে পাঠালেন| সে এলিয়র কাছে এসে হাঁটু গেড়ে অনুনয় করে বললো, “হে ঈশ্বরের লোক, আমার আর আমার এই 50 জন সেনার প্রাণের কোনো মূল্যই কি আপনার কাছে নেই? 14 স্বর্গ থেকে অগ্নি বৃষ্টি হয়ে আমার আগের দুই সেনাপতি আর তাদের সঙ্গের 50 জন মারা পড়েছে| দয়া করে আপনি আমাদের প্রাণে মারবেন না, আমাদের প্রাণ আপনার কাছে মূল্যবান হোক|” 15 তখন প্রভুর দূত এলিয়কে বললেন, “ভয পেও না, তুমি এর সঙ্গে যাও|”এলিয় তখন এই সেনাপতির সঙ্গে রাজা অহসিয়র কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, 16 প্রভু যা বলেন তা হল এই: “ইস্রায়েলে কি কোন ঈশ্বর নেই য়ে তুমি জিজ্ঞাসা করবার জন্য ইএোণর দেবতা বাল্-সবূবের কাছে বার্তাবাহকদের পাঠিয়েছ? য়েহেতু তুমি এরকম করেছ, তুমি আর বিছানা ছেড়ে উঠতে পারবে না| তোমার মৃত্যু অনিবার্য়্য়!” 17 প্রভু য়ে ভাবে এলিয়র মাধ্যমে ভবিষ্যত্বাণী করেছিলেন, ঠিক সে ভাবেই অহসিয়ের মৃত্যু হল| য়েহেতু অহসিয়র কোন পুত্র ছিল না, তার পরে য়োরাম ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন| যিহূদার রাজা যিহোশাফটের পুত্র যিহোরামের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে য়োরাম ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন| 18 অহসিয় আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে|
1 ঘূর্ণিঝড় পাঠিয়ে প্রভুর যখন এলিয়কে স্বর্গে নিয়ে যাবার সময় হয়ে এসেছে, এলিয় এবং ইলীশায় তখন গিল্গল থেকে ফিরে আসার পথে| 2 এলিয় ইলীশায়কে বললেন, “তুমি এখানেই থাকো, কারণ প্রভু আমাকে বৈথেল পর্য়ন্ত য়েতে বলেছেন|”কিন্তু ইলীশায় বললেন, “আমি জীবন্ত প্রভুর নামে ও আপনার নামে শপথ করে বলছি য়ে আমি আপনাকে একলা ছেড়ে যাবো না|” সুতরাং তাঁরা দুজনেই তখন বৈথেলে গেলেন| 3 বৈথেলে ভাব্বাদীদের একদল শিষ্য এসে ইলীশায়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি জানেন য়ে আজ প্রভু আপনার মনিবকে আপনার কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবেন?”ইলীশায় বললেন, “হ্যাঁ জানি| ওকথা থাক|” 4 এলিয় ইলীশায়কে আদেশ করলেন, “তুমি এখানেই থাকো কারণ প্রভু আমাকে য়িরীহোতে য়েতে বলেছেন|”কিন্তু ইলীশায় আবার বললেন, “আমি জীবন্ত প্রভু এবং আপনার নামে শপথ করে বলছি য়ে আমি আপনাকে ছেড়ে যাব না!” তখন তাঁরা দুজনে এক সঙ্গেই য়িরীহোতে গেলেন| 5 য়িরীহোতে আবার ভাব্বাদীদের একদল শিষ্য এসে ইলীশায়কে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি জানেন য়ে প্রভু আজই আপনার মনিবকে আপনার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবেন?”ইলীশায় উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, জানি| আমাকে সেটা মনে করিযে দেবেন না|” 6 এলিয় তখন ইলীশায়কে বললেন, “এখন তুমি এখানেই থাকো| প্রভু আমাকে যর্দন নদীতে য়েতে নির্দেশ দিয়েছেন|”কিন্তু ইলীশায় উত্তর দিলেন, “আমি জীবন্ত প্রভু এবং আপনার নামে শপথ করে বলছি য়ে আমি আপনাকে ছেড়ে যাব না!” তখন তাঁরা দুজনে এক সঙ্গেই য়েতে লাগলেন| 7 ভাব্বাদীদের প্রায় 50 জন শিষ্যের একটি দল তাঁদের পেছন পেছন যাচ্ছিলেন| এলিয় এবং ইলীশায় যখন যর্দন নদীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন তখন ঐ দলটিও তাঁদের থেকে বেশ কিছুটা দূরত্ব রেখে দাঁড়িয়ে পড়লো| 8 এলিয় তাঁর পরণের শাল খুলে সেটাকে ভাঁজ করলেন এবং সেটা দিয়ে জলে আঘাত করলেন| জলধারা ডাঁযে ও বামে ভাগ হয়ে গেল| এলিয় আর ইলীশায় তখন শুকনো মাটির ওপর দিয়ে হেঁটে নদী পার হলেন| 9 নদী পার হবার পর এলিয় ইলীশায়কে বললেন, “ঈশ্বর আমাকে তোমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার আগে বলো, আমি তোমার জন্য কি করতে পারি?”ইলীশায় বলল, “আমি চাই আপনার আত্মার দ্বিগুণ অংশ আমার ওপর ভর করুক|” 10 এলিয় বললেন, “তুমি বড় কঠিন বস্তু চেয়েছ| আমাকে যখন তোমার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে, তখন যদি তুমি আমাকে দেখতে পাও তাহলে তোমার মনের ইচ্ছা পূর্ণ হবে; কিন্তু যদি দেখতে না পাও তাহলে তোমার মনের ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে যাবে|” 11 এসব কথাবার্তা বলতে বলতে এলিয় আর ইলীশায় একসঙ্গে হাঁটছিলেন| হঠাত্ কোথা থেকে আগুনের মতো দ্রুত গতিতে ঘোড়ায় টানা একটা রথ এসে দুজনকে আলাদা করে দিল| তারপর একটা ঘূর্ণি ঝড় এসে এলিয়কে স্বর্গে তুলে নিয়ে গেল| 12 ইলীশায় স্বচক্ষে এ ঘটনা দেখে চিত্কার করে উঠলেন, “আমার মনিব! হে আমার পিতা! তোমরা সবাই দেখ! ইস্রায়েলের রথ আর তাঁর অশ্ববাহিনী!”ইলীশায় এরপর আর কখনও এলিয়কে দেখতে পান নি| এ ঘটনার পর ইলীশায় মনের দুঃখে তাঁর পরিধেয বস্ত্র ছিঁড়ে ফেললেন| 13 এলিয়র শালটা তখনও মাটিতে পড়ে ছিল, তাই ইলীশায় সেটা তুলে নিলেন| তারপর তিনি নদীর জলে আঘাত করলেন এবং বললেন, “কই, কোথায প্রভু? এলিয়র ঈশ্বর কই?” 14 য়ে মূহুর্তে শালটা গিয়ে জলে পড়ল, জলরাশি দুভাগ হয়ে গেল, আর ইলীশায় হেঁটে নদী পার হলেন! 15 ভাব্বাদীদের সেই দলটি যখন য়িরীহোতে ইলীশায়কে দেখতে পেলেন, তাঁরা বললেন, “এলিয়র আত্মা এখন ইলীশায়ের ওপরে ভর করেছেন!” তারপর তাঁরা ইলীশায়ের কাছে এলেন এবং তাঁর সামনে মাথা নত করলেন| 16 তাঁরা তাঁকে বললেন, “দেখুন, আমাদের নিয়ে এখানে 50 জন লোক আছে, তারা সবাই য়োদ্ধার জাত| আপনি যদি অনুমতি করেন, ওরা আপনার মনিবের খোঁজে যাবে| হয়তো প্রভুর আত্মা আপনার মনিবকে তুলে নিয়েছে এবং কোন পর্বতের ওপর বা কোন উপত্যকায ফেলে গেছেন!”কিন্তু ইলীশায় বললেন, “না না, ওঁর খোঁজে কাউকে পাঠানোর প্রয়োজন নেই!” 17 কিন্তু ভাব্বাদীদের সেই শিষ্যদের দল ইলীশায়কে এমন ভাবে মিনতি করতে লাগলো য়ে তিনি হতবুদ্ধি হয়ে পড়লেন| তারপর তিনি বললেন, “ঠিক আছে| এলিয়কে খুঁজে বের করতে কাউকে পাঠাও|”ভাব্বাদীদের দলটি এলিয়কে খুঁজে বের করবার জন্য 50 জন শিষ্যকে পাঠিয়ে দিলেন| তিনদিন খোঁজাখুজির পরেও তাঁরা এলিয়কে খুঁজে পেলেন না| 18 অতএব তাঁরা য়িরীহোতে থাকাকালীন সময়ে ইলীশায়ের কাছে ফিরে গেলেন এবং তাঁকে এখবর দিলেন| ইলীশায় তাদের বললেন, “আমি তো আগেই তোমাদের য়েতে বারণ করেছিলাম|” 19 শহরের লোকরা এসে ইলীশায়কে বলল, “মহাশয আপনি তো দেখতেই পাচ্ছেন য়ে এটি শহরের জন্য একটি উত্তম জায়গা| কিন্তু এখানকার জল খুবই খারাপ এবং জমি সুফলা নয়|” 20 ইলীশায় বললেন, “একটা নতুন বাটিতে করে আমাকে কিছুটা লবণ এনে দাও|”লোকরা কথা মতো ইলীশায়কে বাটি এনে দিতে, 21 ইলীশায় সেটাকে জলের উত্সের কাছে নিয়ে গেলেন, লবণটা তাতে ফেলে দিলেন এবং বললেন, “প্রভু যা বলেন তা হল এই: ‘আমি এই জল পবিত্র করলাম! এরপর থেকে এই জল খেলে আর কারো মৃত্যু হবে না| এই জমিতেও এবার থেকে ফসল হবে|”‘ 22 ইলীশায়ের কথা মতো তখন সেই জল বিশুদ্ধ হয়ে গেল এবং আজ পর্য়ন্ত তা সে রকমই আছে! 23 সেখান থেকে ইলীশায় বৈথেল শহরে গেলেন| তিনি যখন শহরে যাবার জন্য পর্বত পার হচ্ছিলেন তখন শহর থেকে একদল বালক বেরিয়ে এসে তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা শুরু করলো| তারা ইলীশায়কে বিদ্রূপ করল এবং বললো, “এই য়ে টাকমাথা, তাড়াতাড়ি কর! তাড়াতাড়ি পর্বতে ওঠ! টেকো!” 24 ইলীশায় মাথা ঘুরিযে তাদের দিকে দেখলেন, তারপর প্রভুর নামে তাদের অভিশাপ দিলেন| তখন জঙ্গল থেকে হঠাত্ দুটো বিশাল ভাল্লুক বেরিয়ে এসে সেই 42 জন বালককে তীব্র ভাবে ক্ষত-বিক্ষত করে দিল| 25 ইলীশায় বৈথেল থেকে কর্ম্মিল পর্বত হয়ে শমরিয়াতে ফিরে গেলেন|
1 যিহূদায় যিহোশাফটের রাজত্বের 18তম বছরে আহাবের পুত্র যিহোরাম, শমরিয়ায ইস্রায়েলের রাজা হয়ে বসলেন| তিনি 12 বছর রাজত্ব করেছিলেন| 2 যিহোরাম প্রভুর চোখের সামনে মন্দ কাজ করেছিলেন! তবে তিনি তাঁর পিতা বা মাতার মতো ছিলেন না, কারণ তাঁর পিতা বাল মূর্ত্তির আরাধনার জন্য য়ে স্মরণস্তম্ভ তৈরী করেছিলেন, তিনি সেটা সরিয়ে দিয়েছিলেন| 3 কিন্তু তিনি পাপ কাজ চালিযে গেলেন যা নবাটের পুত্র যারবিয়াম করেছিলেন| যারবিয়াম ইস্রায়েলকে পাপ কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন| যিহোরাম এই পাপাচরণ বন্ধ করেন নি| 4 মোযাবের রাজা মেশা ছিলেন এক জন মেষ বংশ বৃদ্ধিকারক| মেশা ইস্রায়েলের রাজাকে 1,00,000 মেষ ও 1,00,000 পুরুষ মেষের উল দিতেন| 5 কিন্তু আহাবের মৃত্যুর পর মোযাবের রাজা ইস্রায়েলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন| 6 তখন রাজা যিহোরাম শমরিয়া থেকে গিয়ে ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দাদের জড়ো করলেন এবং 7 যিহোরাম যিহূদার রাজা যিহোশাফটের কাছে বার্তাবাহক পাঠিয়ে বললেন, “মোযাবের রাজা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে| আপনি কি আমার সঙ্গে মোযাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে য়োগ দেবেন?”যিহোশাফট বললেন, “হ্যাঁ! আমাদের দুজনের সেনাবাহিনী সম্মিলিত ভাবে যুদ্ধ করবে| আমার লোক, ঘোড়া এসবও আপনার|” 8 যিহোশাফট যিহোরামকে প্রশ্ন করলেন, “আমরা কোন পথে যাবো?”যিহোরাম বললেন, “আমরা ইদোমের মরুভূমির মধ্যে দিয়ে যাবো|” 9 ইস্রায়েলের রাজা তখন যিহূদা ও ইদোমের রাজার সঙ্গে য়োগ দিলেন| তাঁরা প্রায় সাতদিন চললেন| পথে সেনাবাহিনী ও তাঁদের জন্তু জানোযারদের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ জল তাঁরা পাননি| 10 ইস্রায়েলের রাজা যিহোরাম বললেন, “আমার মনে হয়, মোয়াবীয়দের কাছে পরাজিত হবার জন্য প্রভু আমাদের তিন জন রাজাকে একত্রিত করেছেন!” 11 যিহোশাফট বললেন, “প্রভুর কোন ভাব্বাদী কি এখানে চারপাশে নেই? আমরা কি করব তাঁকে জিজ্ঞেস করা যাক|”তখন ইস্রায়েলের রাজার ভৃত্যদের এক জন বললো, “শাফটের পুত্র ইলীশায়, যিনি এলিয়র শিষ্য ছিলেন, তিনি এখানে আছেন|” 12 যিহোশাফট বললেন, “আমি শুনেছি প্রভু নিজে ইলীশায়ের মুখ দিয়ে কথা বলেন!”তখন ইস্রায়েলের রাজা যিহোরাম, যিহোশাফট ও ইদোমের রাজা ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| 13 ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজা যিহোরামকে প্রশ্ন করলেন, “আমি আপনার জন্য কি করতে পারি? আপনি কেন আপনার পিতামাতার ভাব্বাদীর কাছেই যাচ্ছেন না?”তখন ইস্রায়েলের রাজা ইলীশায়কে বললেন, “না, আমরা আপনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি, কারণ মোয়াবীয়দের কাছে হেরে যাবার জন্যই প্রভু আমাদের তিন জন রাজাকে এনে একত্রিত করেছেন|” 14 ইলীশায় বললেন, “আমি সর্বশক্তিমান প্রভুর সেবক| তবে আমি যিহূদার রাজা যিহোশাফটকে শ্রদ্ধা করি বলেই এখানে এসেছি| যিহোশাফট এখানে না থাকলে, আমি আপনার দিকে হয়ত মনোয়োগ দিতাম না| 15 যাই হোক এখন আমার কাছে এমন এক জনকে নিয়ে আসুন য়ে বীণা বাজাতে পারে|”বীণাবাদক এসে বীণা বাজাতে শুরু করলে প্রভুর শক্তি ইলীশায়ের ওপর এসে ভর করল| 16 তখন ইলীশায় বলে উঠলেন, “প্রভু বলেন, নদীর তলদেশ খাতময করে দাও| 17 তোমরা কোন বাতাস বা বাদলা দেখতে না পেলেও, জলে ভরে উঠবে সমভূমি| তখন তোমরা আর তোমাদের গরু, বাছুর এবং অন্যান্য জন্তু-জানোযার খাবার জল পাবে| 18 প্রভুর পক্ষে এটি খুব সহজ, তিনি তোমাদের জন্য মোয়াবীয়দের পরাজিত করবেন| 19 প্রত্যেকটা সুদৃঢ়, শক্ত-পোক্ত আর ভালো শহর তোমরা আক্রমণ করবে| কেটে ফেলবে প্রত্যেকটা সতেজ-সবল গাছ| প্রত্যেকটা ঝর্ণার উত্স বন্ধ করে দেবে আর পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে নষ্ট করবে প্রত্যেকটা ভালো ক্ষেত|” 20 সকাল হলে, প্রভাতী বলিদানের সময়ে ইদোমের দিক থেকে জল এসে সমভূমি ভরিয়ে দিল| 21 মোযাবের লোকরা শুনতে পেল, রাজারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছেন| তখন তারা মোযাবে বর্ম পরার মতো বয়স যাদের হয়েছে তাদের সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করে যুদ্ধ বাধার জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করে থাকলো| 22 মোযাবের লোকরা সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সমতল ভূমির উপর জল দেখতে পেল| সূর্য়কে পূব আকাশের রাঙা আলোয রক্তের মত লাল দেখাচ্ছিল| 23 তারা সমস্বরে বলে উঠল, “দেখ, দেখ রক্ত! রাজারা নিশ্চয়ই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মারা পড়েছে| চল এবার আমরা গিয়ে ওদের গা থেকে দামী জিনিসগুলো নিয়ে নিই!” 24 মোয়াবীয়রা ইস্রায়েলীয়দের কাছে আসতেই ইস্রায়েলীয়রা মোয়াবীয় সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করলো| মোয়াবীয়রা তাদের থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল, কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা তাদের ধাওযা করে যুদ্ধ করল| 25 একের পর এক শহর ধ্বংস করে তারা সমস্ত ঝর্ণার মুখ বন্ধ করে দিল| তারা উর্বর ক্ষেত পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে ভর্তি করে দিল, সমস্ত সতেজ গাছ কেটে ফেলল| সারা পথ যুদ্ধ করতে করতে তারা কীর্ হরাসত পর্য়ন্ত গেল| তারা শহরটাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে অধিকার করল| 26 মোযাবের রাজা দেখলেন, তাঁর পক্ষে আর যুদ্ধ করা সম্ভব না| তারপর তিনি সবলে সৈন্যব্য়ূহ ভেদ করে ইদোমের রাজাকে হত্যা করবার জন্য তাঁর সঙ্গে 700 সৈনিক নিলেন| কিন্তু তারা ইদোমের রাজার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারলো না| 27 তখন মোযাবের রাজা তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র যুবরাজকে শহরের বাইরে চারপাশের দেওয়ালের কাছে নিয়ে গিয়ে হোমবলি হিসেবে উত্সর্গ করলেন| এতে ইস্রায়েলীয়রা অত্যন্ত বিপর্য়্য়স্ত হল, তাই মোযাবের রাজাকে ছেড়ে দিয়ে তারা তাদের দেশে ফিরে গেল|
1 এক জন ব্বিাহিত ভাব্বাদীর মৃত্যু হলে তার স্ত্রী এসে ইলীশায়ের কাছে কেঁদে পড়লো, “আমার স্বামী অনুগত ভৃত্যের মতো আপনার সেবা করেছেন| কিন্তু এখন তিনি মৃত! আপনি জানেন আমার স্বামী প্রভুকে সম্মান করেন কিন্তু তিনি এক জন পুরুষের কাছে টাকা ধার করেছিলেন| এখন সেই মহাজন এীতদাস বানানোর জন্য আমার দুই পুত্রকে নিতে আসছে|” 2 ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “কিন্তু আমি কি করে তোমায় সাহায্য করবো? তোমার বাড়িতে কি আছে বলো?”সেই স্ত্রীলোকটি বললো, “আমার বাড়িতে এক জালা তেল ছাড়া আর কিছুই নেই|” 3 তখন ইলীশায় বললেন, “যাও তোমার পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে য়তো পারো খালি বাটি জোগাড় করে নিয়ে এসো| 4 তারপর বাড়ি গিয়ে সমস্ত দরজা বন্ধ করে দাও, ঘরে য়েন তুমি আর তোমার পুত্ররা ছাড়া কেউ না থাকে| এরপর ঐ জালা থেকে তেল ঢেলে প্রত্যেকটা বাটি ভর্তি করে আলাদা আলাদা জায়গায় সরিয়ে রাখো|” 5 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বাড়ী ফিরে গিয়ে সমস্ত দরজা বন্ধ করে দিল| সে আর তার পুত্ররাই শুধুমাত্র ঘরে ছিল| পুত্ররা একটার পর একটা বাটি আনছিল| 6 স্ত্রীলোকটি সেগুলোতে তেল ঢালছিল| এমনি করে করে বহু পাত্র ভরা হল| অবশেষে সে তার পুত্রদের বললো, “আমাকে আর একটি বাটি এনে দাও|”তার এক পুত্র তাকে বললো, “আর তো বাটি নেই|” তত্ক্ষণাত্ জালার তেল ফুরিযে গেল| 7 স্ত্রীলোকটি গিয়ে ঈশ্বরের লোক, ইলীশায়কে একথা জানালো| ইলীশায় তাকে বললেন, “যাও, তেল বিক্রি করে দেনা মিটিযে ফেলো| যা বাকী টাকা থাকবে তাতে তোমার আর তোমার পুত্রদের জন্য য়থেষ্ট হবে|” 8 ইলীশায় যখন একদিন শূনেমে যান, সেখানকার এক ধনবতী মহিলা তাঁকে নিজের বাড়িতে খাবার জন্য নেমন্তন্ন করল| এরপর থেকে ইলীশায় ওখান দিয়ে গেলেই ঐ মহিলার বাড়িতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করতেন| 9 সেই মহিলা তাঁর স্বামীকে বলল, “আমি জানি ইনি ঈশ্বরের একজন পবিত্র মানুষ| সব সময়ই তিনি আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাতাযাত করেন| 10 চলো না, ওঁর জন্য ছাদে একটা ছোটো ঘর তুলে দিই| সেখানে একটা বিছানা, টেবিল, চেযার আর বাতিদান রেখে দেব| তাহলে এরপর যখন তিনি আমাদের বাড়ি আসবেন ঐ ঘরখানা নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন|” 11 এক দিন ইলীশায় এই মহিলার বাড়ীতে এলেন, তিনি কক্ষে গিয়ে বিশ্রাম নিলেন| 12 ইলীশায় তাঁর ভৃত্য গেহসিকে বললেন, “ঐ শূনেমীয মহিলাটিকে ডাক|”ভৃত্যটি মহিলাকে ডেকে আনার পর, সে সামনে দাঁড়ালে ইলীশায় 13 তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “ওকে বলো, ‘দেখো তুমি আমাদের দুজনের য়ত্ন নেবার জন্য তোমার যথাসাধ্য করেছো| এখন আমরা তোমার জন্য কি করতে পারি? আমরা কি তোমার হয়ে রাজা বা সেনাপতির কাছে কিছু বলবো?”‘তখন মহিলা উত্তর দিল, “আমি এখানে আমার আত্মীয-স্বজনের মধ্যে দিব্য়ি আছি|” 14 ইলীশায় তখন গেহসিকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা তাহলে ওর জন্য কি করতে পারি?”গেহসি উত্তর দিলো, “দাঁড়ান, আমি যতদূর জানি এই মহিলার কোনো পুত্র নেই আর ওঁর স্বামীরও য়থেষ্ট বয়স হয়েছে|” 15 ইলীশায় বললেন, “ওকে ডেকে নিয়ে এসো|” গেহসি তখন সেই মহিলাকে ডাকতে গেলো| মহিলা এসে দরজার কাছে দাঁড়ালে 16 গেহসি তাকে বলল, “প্রায় একই সময়, আগামী বছর তুমি তোমার নিজের পুত্রকে আদর করবে|”একথা শুনে মহিলাটি বলল, “হে প্রভু, আমার সঙ্গে মিথ্যে ছলনা করবেন না!” 17 ইলীশায়ের কথা মতোই, সেই মহিলা পরের বছর সে তার পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| 18 ছেলেটি বড় হবার পর একদিন মাঠে তার পিতার ও অন্যদের সঙ্গে শস্য কাটা দেখতে গেল| 19 সেখানে গিয়ে ছেলেটা হঠাত্ বলে উঠল, “ওফ্ আমার বড্ড মাথা ব্যথা করছে!”তার পিতা ভৃত্যদের বলল, “ওকে তাড়াতাড়ি ওর মায়ের কাছে নিয়ে যাও!” 20 ভৃত্যরা ছেলেটিকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাবার পর ও দুপুর পর্য়ন্ত মায়ের কোলে বসে থেকে তারপর মারা গেল| 21 মহিলাটি তখন মৃত ছেলেটিকে ইলীশায়ের ঘরে তাঁর বিছানায শুইযে দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে এল| 22 স্বামীকে ডেকে বলল, “ওগো, আমায় একটা গাধা আর এক জন ভৃত্য দাও| আমি একবার তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের লোকের কাছ থেকে ঘুরে আসি|” 23 মহিলার স্বামী বলল, “আজ কেন ওঁর কাছে য়েতে চাইছো? আজ তো অমাবস্যাও নয়, বিশ্রামের দিনও নয়|”সে স্বামীকে বলল, “কিছু ভেবো না, সব ঠিক হয়ে যাবে|” 24 তারপর গাধার পিঠে জিন চাপিয়ে মহিলা তার কাজের লোককে বলল, “চলো এবার তাড়াতাড়ি যাওয়া যাক! কেবল মাত্র যখন আমি বলব তখন ধীরে য়েও!” 25 ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে মহিলা কর্মিল পর্বতে গেল|ইলীশায় দূর থেকে শূনেমীয মহিলাকে আসতে দেখে তাঁর ভৃত্য গেহসিকে বললেন, “দেখো, সেই শূনেমীয মহিলা আসছেন! 26 তুমি তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে খোঁজ নাও তো, ‘কি হল - সব ঠিক আছে কি না, ওর স্বামী কেমন আছে? বাচচাটার শরীর ভালো আছে কি না?”‘গেহসি মহিলাকে এসব জিজ্ঞেস করতে সে বলল, “সবই ঠিকঠাক আছে|” 27 তারপর পাহাড়ের ওপরে ইলীশায়ের সামনে নত হয়ে তাঁর পা জড়িয়ে ধরলেন| গেহসি মহিলাকে ছাড়িযে নিতে গেলে ইলীশায় বললেন, “ওকে কিছু ক্ষণ আমার সঙ্গে একা থাকতে দাও! ও খুবই ভেঙ্গে পড়েছে| আর প্রভুও আমাকে এখবর দেন নি, আমার কাছে গোপন করেছিলেন|” 28 তখন সেই শূনেমীয মহিলা বলল, “আমি তো আপনার কাছে কখনও কোন পুত্র চাইনি| আমি তো আপনাকে বলেছিলাম, ‘আমার সঙ্গে ছলনা করবেন না!”‘ 29 একথা শুনে, ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “কোমর বেঁধে তৈরি হও, আমার লাঠিটা নাও এবং এক্ষুনি যাও| পথে কারো সঙ্গে কথা বলার জন্য থেমো না| যদি কারো সঙ্গে দেখা হয়, “কি কেমন” পর্য়ন্ত বলার দরকার নেই| তোমাকেও কেউ বললে, কোন উত্তর দেবে না| মহিলার বাড়িতে পৌঁছে আমার লাঠিটা বাচচাটার মুখে ছুঁইযে দিও|” 30 কিন্তু ছেলেটির মা বলল, “আমি জীবন্ত প্রভু এবং আপনার নামে শপথ করে বলছি: আমি আপনাকে ছেড়ে যাব না!”তাই ইলীশায় উঠে দাঁড়ালেন এবং তাকে অনুসরণ করলেন| 31 এদিকে গেহসি মহিলা ও ইলীশায়ের আগে আগে বাড়িতে এসে সেই লাঠিটা নিয়ে বাচচাটার মুখে ছোঁযালো, কিন্তু তাতে কোন জীবনের লক্ষণ দেখা গেল না| গেহসি তখন ফিরে এসে ইলীশায়কে বলল, “ছেলেটা তো উঠল না প্রভু!” 32 ইলীশায় বাড়ির ভেতর তাঁর ঘরে গিয়ে দেখলেন, মৃত শিশুটিকে তাঁরই বিছানায শোওযানো আছে| 33 ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন ইলীশায়| এখন সেখানে শুধু তিনি আর সেই মৃত ছেলেটি, এরপর তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন| 34 তারপর বিছানায গিয়ে শুয়ে পড়লেন সেই মৃত ছেলেটির দেহের ওপর| তিনি ছেলেটির মুখের ওপর নিজের মুখ রাখলেন, তার চোখের ওপর নিজের চোখ এবং তার হাতের ওপর নিজের হাত রাখলেন| এভাবে ঐ মৃত শরীরটা গরম হয়ে না ওঠা পর্য়ন্ত শুয়ে থাকলেন ইলীশায়| 35 তারপর উঠে পড়ে ঘরটার চারপাশে কিছুক্ষণ হেঁটে আবার গিয়ে ঐ দেহের ওপর শুলেন তিনি| ওভাবেই তিনি শুয়ে থাকলেন, যত ক্ষণ না সাতবার হাঁচার পর চোখ মেলে উঠে বসল ছেলেটা| 36 ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “যাও গিয়ে ওর মাকে ডেকে নিয়ে এসো!” গেহসি তাকে নিয়ে এলে, ইলীশায় বললেন, “ছেলেকে কোলে নাও|” 37 তখন সেই মহিলা ঘরে ঢুকে ভক্তি ভরে ইলীশায়ের পাযে প্রণাম করে ছেলেকে কোলে তুলে বেরিয়ে গেল| 38 গিল্গলে তখন দুর্ভিক্ষ চলছিল| ইলীশায় আবার সেখানে গেলেন| ভাব্বাদীদের দলটি তাঁর সামনে বসে ছিল| ইলীশায় তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “বড় পাত্রটা আগুনে বসিযে এদের জন্য একটু রান্না কর|” 39 এক জন মাঠে শাকসব্জি তুলতে গেল| মাঠে গিয়ে একটা ফলভরা জঙ্গলী লতা দেখতে পেয়ে লোকটা ফল ছিড়ে কোঁচড়ে বেঁধে নিয়ে এলো| তারপর সেই ফল কেটে পাত্রে দিয়ে দিল, যদিও ভাব্বাদীদের দল আদৌ জানতো না ওটা কি ধরণের ফল| 40 ঝোল রান্না হলে পাত্রে কিছুটা ঢেলে সবাইকে খেতে দেওয়া হল| কিন্তু সকলে সেই ঝোল মুখে দিয়েই চিত্কার করে ইলীশায়কে বললো, “ঈশ্বরের লোক পাত্রে বিষ মেশানো আছে!” ঝোলের স্বাদ বিষাক্ত হওয়ায় ওরা কেউই তা খেতে পারলো না|” 41 ইলীশায় তখন কিছুটা মযদা আনতে বললেন| মযদা আনা হলে, তিনি সেই মযদা পাত্রে ছুঁড়ে দিয়ে বললেন, “এবার ঐ ঝোল সবাইকে খেতে দাও|”আর আশ্চর্য়্য় ব্যাপার, ঝোলটা বেশ খাবার য়োগ্য হয়ে গেল| 42 বাল্-শালিশা থেকে এক জন ইলীশায়ের জন্য নবান্নের ফসল হিসেবে 20 খানা য়বের রুটি আর ঝোলা ভরে শস্য উপহার নিয়ে এসেছিল| ইলীশায় বললেন, “এই সব খাবার এখানে যারা আছে তাদের খেতে দাও|” 43 ইলীশায়ের ভৃত্য বললো, “এখানে প্রায় 100 জন লোক আছে| এত জন লোককে আমি এইটুকু খাবার কি করে দেব?”কিন্তু ইলীশায় বললেন, “আমি বলছি তুমি খেতে দাও| প্রভু বলছেন, ‘সবাই খাওয়ার পরেও খাবার পড়ে থাকবে|”‘ 44 তখন ইলীশায়ের ভৃত্য সেই সব খাবার নিয়ে ভাব্বাদীদের সামনে ধরলো| তাদের পেট ভরে খাওয়ানোর পরেও, প্রভু য়েমন বলেছিলেন দেখা গেল তখনও খাবার পড়ে আছে|
1 অরামের রাজার সেনাপতি ছিল নামান| রাজার কাছে নামান ছিল এক জন মহান এবং খুব শ্রদ্ধেয ব্যক্তি, কারণ প্রভু সব সময় তাঁর মাধ্যমে অরামকে বিজয়ের পথে নিয়ে য়েতেন| নামান খুবই শক্তিশালী ও মহান হলেও তিনি কুষ্ঠ রোগাএান্ত ছিলেন| 2 অরামীয়রা বহুবার ইস্রায়েলে যুদ্ধ করতে সেনা-বাহিনী পাঠিয়েছিল| এই সব সেনারা এখানকার লোকদের এীতদাস করেও নিয়ে গিয়েছে| একবার তারা ইস্রায়েল থেকে একটা বাচচা মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়| কালএমে এই ছোট মেয়েটি নামানের স্ত্রীর এক দাসীতে পরিণত হয়| 3 মেয়েটি নামানের স্ত্রীকে বলল, “মনিব শমরিয়ায বাসকারী ভাব্বাদীর সঙ্গে দেখা করলে তিনি নিশ্চয়ই তাঁর কুষ্ঠরোগ সারিযে দিতেন|” 4 নামান তাঁর মনিবকে (অরামের রাজাকে) গিয়ে ইস্রায়েলীয় মেয়েটা কি বলেছে তা বললেন| 5 তখন অরামের রাজা বললেন, “ঠিক আছে, তুমি এখনই যাও| আমি ইস্রায়েলের রাজাকে একটা চিঠি দিচ্ছি|”নামান তখন 750 পাউণ্ড রূপো, 6,000 টুকরো সোনা আর দশ প্রস্থ পোশাক উপহার স্বরূপ নিলেন এবং ইস্রায়েলে গেলেন| 6 নামানের সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজাকে লেখা অরামের রাজার চিঠিও ছিল যাতে লেখা ছিল, “আমি আমার সেবক নামানকে কুষ্ঠরোগ সারানোর জন্য আপনার কাছে পাঠালাম|” 7 চিঠিটা পড়ে ইস্রায়েলের রাজা মনোকষ্টে তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে বললেন, “আমি তো আর ঈশ্বর নই! জীবন-মৃত্যুর ওপর আমার যখন কোন হাত নেই, তখন কেন অরামের রাজা কুষ্ঠরোগাএান্ত এক জনকে আমার কাছে সারিযে তোলার জন্য পাঠালেন? এটা খুবই স্পষ্ট য়ে তিনি একটি যুদ্ধ বাধাবার পরিকল্পনা করছেন!” 8 ঈশ্বরের লোক ইলীশায় খবর পেলেন শোকার্ত ইস্রায়েলের রাজা তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছেন| তখন তিনি রাজাকে খবর পাঠালেন: “তুমি কেন পোশাক ছিঁড়ে কষ্ট পাচ্ছ? নামানকে আমার কাছে আসতে দাও, তাহলে ও বুঝবে ইস্রায়েলে সত্যি সত্যিই একজন ভাব্বাদী বাস করে!” 9 নামান তখন তাঁর রথ ও ঘোড়া নিয়ে ইলীশায়ের বাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ালেন| 10 ইলীশায় এক জনকে দিয়ে খবর পাঠালেন, “যাও যর্দন নদীতে গিয়ে সাত বার স্নান করো, তাহলেই তোমার চামড়া ঠিক হয়ে যাবে আর তুমিও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে|” 11 নামান খুবই রুদ্ধ হয়ে চলে গেলেন| তিনি বললেন, “আমি ভেবেছিলাম একবার অন্তত ইলীশায় বাইরে এসে তাঁর প্রভু ঈশ্বরের নাম নিয়ে আমার গায়ের ওপর হাত নেড়ে আমার কুষ্ঠরোগ সারিযে তুলবেন! 12 দম্মেশকের অবানা আর পর্পর নদীর জল ইস্রায়েলের য়ে কোন জলের থেকেই ভালো! ওই সব নদীতে গা ধুলে কেন হবে না?” নামান প্রচণ্ড রেগে গিয়ে ফিরে যাবেন বলে ঠিক করলেন| 13 কিন্তু নামানের ভৃত্যরা তাঁকে গিয়ে বললো, “মনিব, ভাব্বাদী যদি আপনাকে খুব শক্ত কিছু বলতেন, আপনি নিশ্চয়ই তা শুনতেন, তাই না? উনি যখন আপনাকে খুব সহজ একটা কাজ বলেছেন, সেটা অবশ্যই করা উচিত্| উনি তো বলেই ছিলেন, ‘ধুলেই তুমি শুচি হয়ে যাবে|”‘ 14 নামান তখন ইলীশায়ের কথামতো,যর্দন নদীর জলে সাতবার ডুব দিলেন এবং নামানের দেহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরাময় হয়ে উঠল| একেবারে শিশুদের ত্বকের মতোই নরম হয়ে গেল! 15 নামান আর তাঁর দলের সবাই তখন ইলীশায়ের কাছে ফিরে এলেন| ইলীশায়ের সামনে দাঁড়িয়ে নামান বললেন, “এতদিনে আমি বুঝলাম ইস্রায়েল ছাড়া পৃথিবীতে আর কোথাও কোন ঈশ্বর নেই! এখন আপনি অনুগ্রহ করে আমার থেকে একটা উপহার গ্রহণ করুন!” 16 কিন্তু ইলীশায় বললেন, “আমি প্রভুর সেবা করি এবং আমার প্রতিজ্ঞা, যতদিন প্রভু আছেন আমি কোন উপহার নিতে পারব না|”নামান উপহার নেবার জন্য ইলীশায়কে অনেক অনুনয় বিনয় করেও টলাতে পারলেন না| 17 তখন নামান বললেন, “আপনি যখন নিতান্তই কোন উপহার নেবেন না, অন্তত আমাকে ইস্রায়েল থেকে দু-টুকরি এখানকার ধূলো আমার দুটো খচচরের পিঠে চাপিয়ে নিয়ে য়েতে অনুমতি দিন| কারণ এরপর থেকে আমি আর কোন মূর্ত্তিকেই হোমবলি বা কোন নৈবেদ্য দেব না| আমি শুধুমাত্র প্রভুকেই বলিদান করব| 18 আর আমি আগে থাকতেই ক্ষমা চেয়ে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে নিচ্ছি: ভবিষ্যতে আমার মনিব অরামরাজ যখন রিম্মোণের মন্দিরের মূর্ত্তিকে পূজো দিতে যাবেন, তাঁর ওপর ভর নামবে বলে আমায় সেখানে মাথা নীচু করতেই হবে| কিন্তু প্রভু য়েন সেজন্য আমাকে ক্ষমা করেন|” 19 ইলীশায় তখন নামানকে আশীর্বাদ করে বললেন, “যাও সুখে শান্তিতে থাকো|”নামান যখন ইলীশায়ের কাছ থেকে বিদায নিয়ে কিছু দূর গিয়েছেন, 20 ইলীশায়ের ভৃত্য গেহসি বলল, “দেখেছো, আমার প্রভু কোন উপহার না নিয়েই অরামীয় নামানকে ছেড়ে দিলেন| আমি বরঞ্চ এই বেলা গিয়ে ওর কাছ থেকে কিছু হাতানোর ব্যবস্থা করি!” 21 এই বলে গেহসি নামানের পেছন পেছন দৌড়তে লাগল|নামান যখন দেখতে পেলেন একজন কেউ ছুটতে ছুটতে আসছে তিনি তখন রথ থেকে নেমে গেহসিকে প্রশ্ন করলেন, “কি, সব ঠিক আছে তো?” 22 গেহসি বললো, “হ্যাঁ সব ঠিকই আছে| আমার মনিব আমাকে বলে পাঠালেন, ‘ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের ভাব্বাদীদের দলের দুজন এসেছে| অনুগ্রহ করে তাদের যদি 75 পাউণ্ড রূপো আর দু-প্রস্থ পোশাক-আশাক দাও তো বড়-ভালো হয়|”‘ 23 একথা শুনে নামান বললেন, “75 পাউণ্ড কেন? 150 পাউণ্ড নাও!” তারপর নামান দুটো বস্তায 150 পাউণ্ড রূপো ভরে, তার সঙ্গে দু-প্রস্থ জামাকাপড় দিয়ে জোর করে তাঁর দুজন ভৃত্যকে গেহসির সঙ্গে পাঠালেন| 24 ভৃত্যরা এই সব জিনিস বয়ে পাহাড় পর্য়ন্ত নিয়ে আসার পর, গেহসি জিনিসগুলি নিয়ে ওদের ফেরত্ পাঠিয়ে দিল| তারপর ও এই সমস্ত জিনিস বাড়িতে লুকিয়ে রাখলো| 25 গেহসি এসে মনিবের সামনে দাঁড়ানোর পর ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কোথায গিয়েছিলে?”গেহসি উত্তর দিল, “কোথাও না তো|” 26 ইলীশায় তখন বললেন, “শোন, নামান যখন রথ থেকে নেমে তোমার সঙ্গে দেখা করে, তখন আমার হৃদয় তোমার সঙ্গে ছিল, এটা টাকাপয়সা, জামাকাপড়, জলপাই কুঞ্জ, দ্রাক্ষা ক্ষেত, গরু, মেষ, দাস-দাসী নেবার সময় নয়| 27 এখন নামানের রোগ তোমার আর তোমাদের উত্তরপুরুষদের হবে| তোমাদের কুষ্ঠ হবে|”গেহসি যখন ইলীশায়ের কাছ থেকে চলে গেলেন, তখন ওর গায়ের চামড়া সাদা হয়ে গেল, বরফের মত সাদা|
1 তরুণ ভাব্বাদীরা ইলীশায়কে বললো, “আমরা ওখানে য়ে জায়গায় থাকি সেটা আমাদের পক্ষে বড্ড ছোট| 2 চলুন যর্দন নদীর তীর থেকে কিছু কাঠ কেটে আনা যাক| আমরা প্রত্যেকে একটা করে গুঁড়ি নিয়ে এসে ওখানেই একটা থাকার জায়গা বানানো যাক|”ইলীশায় বললেন, “বেশ তো, যাও না|” 3 ওদের এক জন বললো, “আপনিও চলুন না আমাদের সঙ্গে|”ইলীশায় বললেন, “ঠিক আছে, চলো আমিও যাচ্ছি|” 4 ইলীশায় তখন ওদের সঙ্গে যর্দন নদীর তীরে গেলেন| সেখানে গিয়ে তরুণ ভাব্বাদীরা সবাই গাছ কাটতে শুরু করলো| 5 গাছ কাটার সময় এক জনের কুড়ুলের লোহার ডগাটা হাতল থেকে পিছলে গিয়ে একেবারে জলে গিয়ে পড়লো| লোকটা চেঁচিয়ে উঠলো, “য়াঃ! এখন কি হবে? প্রভু আমি য়ে অন্য লোকের কুড়ুল ধার করে এনেছিলাম!” 6 ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “ঠিক কোথায পড়েছে ওটা?”লোকটা ইলীশায়কে জায়গাটা দেখানোর পর, তিনি একটা ছড়ি কেটে সেটা জলে ছুঁড়ে ফেললেন| এতে কুড়ুলের মাথাটা সেই ছড়ির সঙ্গে ভেসে উঠলো! 7 ইলীশায় বললেন, “যাও ওটা তুলে নাও এবার|” কৃতজ্ঞ চিত্তে লোকটি কুড়ুলের মাথাটা তুলে নিল| 8 অরামের রাজা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন| তিনি তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একটি পরিষদীয বৈঠক করলেন| তিনি বললেন, “আমি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় শিবির স্থাপন করব|” 9 কিন্তু ঈশ্বরের লোকটি ইস্রায়েলের রাজাকে একটি খবর দিয়ে সতর্ক করে দিলেন, “ওখান দিয়ে যাতাযাত করো না! খুব সাবধান! কারণ ওখানে অরামীয় সেনাবাহিনীর লোকরা লুকিয়ে আছে!” 10 খবর পেয়ে ইস্রায়েলের রাজা সঙ্গে সঙ্গে য়ে জায়গা সম্পর্কে ইলীশায় তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, তাঁর লোকদের জানিয়ে দিলেন এবং তিনি তাঁর বাহিনীর অনেকের জীবন রক্ষা করতে পারলেন| 11 এঘটনায অরামের রাজা খুবই বিচলিত হয়ে তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধানদের এক বৈঠকে ডেকে বললেন, “এখানে ইস্রায়েলের হয়ে কে গুপ্তচরের কাজ করছে বল?” 12 তখন অরামীয় সেনাপ্রধানদের এক জন বললেন, “আমার মনিব এবং রাজা, আমাদের মধ্যে কেউই গুপ্তচর নয়! ইস্রায়েলের ভাব্বাদী ইলীশায়, ইস্রায়েলের রাজাকে অনেক গোপন খবরই দৈব্বলে জানিয়ে দিতে পারেন| এমন কি আপনি শোবার ঘরে য়ে সব কথাবার্তা বলেন তাও উনি জানতে পারেন!” 13 অরামের রাজা বললেন, “আমি লোক পাঠাচ্ছি| এই ইলীশায়কে খুঁজে বের করতেই হবে!”ভৃত্যরা রাজাকে খবর দিল, “ইলীশায় এখন দোথনে আছেন!” 14 অরামের রাজা তখন রথবাহিনী, ঘোড়া ইত্যাদি সহ সেনাবাহিনীর একটা বড় দল দোথনে পাঠালেন| তারা রাতারাতি সেখানে এসে শহরটাকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেললো| 15 সেই দিন, ঈশ্বরের লোকটির ভৃত্য খুব ভোরে উঠে পড়ল, বাইরে গিয়ে দেখে ঘোড়া রথসহ বিরাট এক সেনাবাহিনী শহরের চারপাশ ঘিরে আছে! সে ছুটে গিয়ে ঈশ্বরের লোককে জিজ্ঞেস করল, “প্রভু আমরা এখন কি করব?” 16 ইলীশায় বললেন, “ভয পেও না! আমাদের জন্য য়ে সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে তা অরামের সেনাবাহিনীর থেকে অনেক বড়!” 17 ইলীশায় তারপর প্রার্থনা করে বললেন, “হে প্রভু, আমার ভৃত্যের চক্ষু উন্মিলীত কর যাতে ও দেখতে পায|”য়েহেতু প্রভু সেই তরুণ ভৃত্যকে অলৌকিক দৃষ্টি দিলেন, ও দেখতে পেল, গোটা শহরটা শত সহস্র ঘোড়া আর আগুনের রথে ভরে রযেছে! ইলীশায়কে ঘিরে আছে এই বাহিনী| 18 এই সুবিশাল বাহিনী ইলীশায়ের আদেশের অপেক্ষায নেমে এলে, তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “তুমি ঐসব সেনার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নাও|”ইলীশায়ের প্রার্থনা মতো প্রভু তখন অরামীয় সেনাবাহিনীর দৃষ্টিশক্তি হরণ করলেন| 19 ইলীশায় অরামীয় সেনাবাহিনীকে ডেকে বললেন, “এটা সঠিক পথ বা শক্ত শহর নয়| আমার সঙ্গে সঙ্গে এসো| তোমরা যাকে খুঁজছো, আমি তোমাদের তার কাছে পৌঁছে দেব চল|” একথা বলে ইলীশায় তাদের শমরিয়ায নিয়ে গেলেন| 20 শমরিয়ায পৌঁছনোর পর ইলীশায় বললেন, “প্রভু এবার ওদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিযে দাও যাতে ওরা আবার দেখতে পায|” প্রভু তখন তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিযে দিলে অরামীয় সেনাবাহিনী দেখলো তারা সকলে শমরিয়া শহরের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে| 21 ইস্রায়েলের রাজা অরামীয় সেনাবাহিনীকে দেখার পর ইলীশায়কে জিজ্ঞেস করলেন, “হে আমার পিতা, আমি কি এদের হত্যা করব?” 22 ইলীশায় বললেন, “না, ওদের তুমি হত্যা কর না| যুদ্ধে তরবারি আর তীর-ধনুকের বলে যাদের তুমি বন্দী করবে, তাদের হত্যা করবে না| অরামীয় সেনাদের এখন রুটি আর জল পান করতে দাও| খাওয়া-দাওয়া হলে ওদের রাজার কাছে ওদের বাড়ীতে ফেরত্ পাঠিয়ে দিও|” 23 তখন ইস্রায়েলের রাজা অরামীয় সেনাবাহিনীর জন্য অনেক খাবার বানালেন| অরামের সেনারা সে সব খাবার পর মহারাজ তাদের নিজেদের বাড়িতে ফেরত্ পাঠিয়ে দিলেন| অরামীয় সেনাবাহিনী তাদের মনিবের কাছে দেশে ফিরে গেল| এরপর আর কখনও অরামীয়রা লুঠপাট চালানোর জন্য ইস্রায়েলে কোন সেনাবাহিনী পাঠায নি| 24 এই ঘটনার পর, অরামের রাজা বিন্হদদ তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী জড়ো করে শমরিয়া শহরকে ঘেরাও করে আক্রমণ করতে যান| 25 অরামীয় সেনারা লোকদের বাইরে থেকে শহরে খাবার আনতে দিচ্ছিল না| ফলে শমরিয়ায ভযাবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হল| খাবারের দাম এতো বেশী ছিল য়ে গাধার মাথা কিনতে দিতে হচ্ছিল 80 টুকরো রৌপ্য মুদ্রা, এমনকি ঘুঘু পাখীর বিষ্ঠাও বিক্রি হচ্ছিল পাঁচ টুকরো রৌপ্য মুদ্রায| 26 ইস্রায়েলের রাজা শহরের চারপাশের প্রাচীরের ওপর পাযচারি করছিলেন, হঠাত্ এক মহিলা চেঁচিয়ে উঠলো, “হে রাজন, দয়া করে আমার প্রাণ বাঁচান!” 27 তখন ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “প্রভু যদি নিজে তোমাকে রক্ষা না করেন, আমি কি করতে পারি বল? তোমাকে দেবার মতো আমার কিছুই নেই| এমনকি শস্য মাড়াইযের জমিতেও কোন শস্য নেই বা দ্রাক্ষা পেষার যন্ত্র থেকেও দ্রাক্ষারস নেই|” 28 তা যাকগে, “তোমার সমস্যাটা কি বলো?”মহিলা উত্তর দিলেন, “দেখুন ঐ মহিলাটি আমায় বলেছিল, ‘আজকে তোমার ছেলেটাকে দাও, মেরে খাওয়া যাক| কাল আমারটাকে খাওয়া যাবে|’ 29 তখন আমরা আমার ছেলেটাকে সেদ্ধ করে খেলাম| আর পরের দিন আমি খাবার জন্য ওর ছেলেটাকে আনতে গিয়ে দেখি, ও ওর ছেলেটাকে লুকিয়ে ফেলেছে!” 30 একথা শুনে রাজা অত্যন্ত মনোকষ্টে, শোক প্রকাশের জন্য নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন| দেওয়ালের ওপর দিয়ে যাবার সময়, লোকরা দেখতে পেল মহারাজ তাঁর পোশাকের তলায় শোক প্রকাশের চটের জামা পরে আছেন| 31 রাজা তখন মনে মনে বললেন, “এসবের পরেও যদি আজ বিকেল পর্য়ন্ত শাফটের পুত্র ইলীশায়ের ধড়ে মুণ্ডুটা আস্ত থাকে, তবে য়েন ঈশ্বর আমাকে শাস্তি দেন!” 32 রাজা ইলীশায়ের কাছে এক জন বার্তাবাহক পাঠালেন| ইলীশায় আর প্রবীণরা তখন ইলীশায়ের বাড়ীতে এক সঙ্গে বসেছিলেন| ইলীশায় প্রবীণদের বললেন, “দেখো খুনীর বেটা রাজা, আমার মুণ্ডু কাটার জন্য লোক পাঠিয়েছে! দূত এলে দরজাটা বন্ধ করে দিও, ওকে কিছুতেই ভেতরে ঢুকতে দেবে না| ওর পেছন পেছন ওর মনিবের পাযের আওয়াজ পাচ্ছি আমি!” 33 ইলীশায় যখন এসব কথাবার্তা বলছেন, বার্তাবাহক খবরটা নিয়ে পৌঁছল| খবরটা হল: “প্রভু যখন বয়ং এই বিপদ ডেকে এনেছেন তখন আমি কেন আর প্রভুর ওপর বিশ্বাস রাখব?”
1 ইলীশায় বললেন, “প্রভুর বার্তা শোন! প্রভু বলেন: ‘আগামীকাল এ সময়ের মধ্যেই শমরিয়া শহরের ফটকগুলোর পাশের বাজারে এক টুক্রি মিহি মযদা অথবা দু টুক্রি য়ব কেবলমাত্র এক শেকল দিয়ে কিনতে পাওয়া যাবে|”‘ 2 রাজার ঠিক পাশেই য়ে সেনাপতি ছিল সে বলে উঠল, “প্রভু যদি স্বর্গে ছেঁদা করার ব্যবস্থাও করেন, তাহলেও আপনি যা বলছেন তা ঘটা অসম্ভব!”ইলীশায় বললেন, “সম্ভব কি অসম্ভব তা তুমি নিজের চোখেই দেখতে পাবে| তবে তুমি ঐ খাবার ছুঁতেও পারবে না|” 3 শহরের প্রবেশদ্বারের কাছে চার জন কুষ্ঠরোগে আএান্ত হয়েছিল| তারা একে অপরকে বলল, “এখানে আমরা না খেযে শুকিয়ে মরছি কেন? 4 শমরিয়ায তো একদানা খাবারও নেই| শহরে গেলেও আমরা মরব, এখানে থাকলেও মারা পড়ব| তার চেয়ে চল অরামীয়দের তাঁবুর দিকে যাওয়া যাক| ওরা চাইলে আমরা বেঁচেও য়েতে পারি, আর নয়তো মরতে হবে|” 5 কথা মতো সেদিন বিকেলবেলা কুষ্ঠরোগীরা অরামীয়দের তাঁবুতে গিয়ে উপস্থিত হল| তাঁবুর কাছাকাছি এসে ওরা দেখল, ধারে কাছে কেউই নেই! 6 প্রভুর মহিমায, অরামীয় সেনাবাহিনীর লোকরা বাইরে রথবাহিনী, ঘোড়া-টোড়া নিয়ে বিশাল এক সেনাবাহিনীর এগিয়ে আসার আওয়াজ শুনে ভেবেছিল, “নিশ্চয়ই ইস্রায়েলের রাজা হিত্তীয় আর মিশরীয রাজাকে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ভাড়া করে এনেছে!” 7 তাই অরামীয়রা সেদিন বিকেল-বিকেলই তাঁবু, ঘোড়া, গাধা সব কিছু পেছনে ফেলেই প্রাণের দাযে পালিয়ে গেল| 8 তারপর শএুশিবিরে এসে কুষ্ঠরোগীরা একটা তাঁবুতে ঢুকে প্রাণভরে খাওয়া-দাওয়া করল| তারপর চারজন মিলে তাঁবু থেকে সোনা, রূপো, পোশাক-আশাক বের করে নিয়ে সে সব লুকিয়ে রাখল| তারপর চার জন আরেকটা তাঁবু থেকেও এই ভাবে জিনিসপত্র সরানোর পর বলাবলি করল, 9 “আমরা খুব অন্যায করছি| এতো বড় একটা সুখবর পাওয়ার পরেও আমরা চুপচাপ আছি| আমরা যদি এভাবে সূর্য়াস্ত পর্য়ন্ত খবরটা চেপে থাকি, আমাদের শাস্তি পেতে হবে| এখন চলো গিয়ে রাজবাড়ীর লোকদের খবরটা দেওয়া যাক|” 10 এই কুষ্ঠরোগীরা তখন এসে শহরের প্রহরীদের ডাকাডাকি শুরু করল| তারা প্রহরীদের বলল, “আমরা অরামীয়দের শিবিরে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে কাউকে দেখতে পেলাম না| এমন কি কারো কোন সাড়া-শব্দ অবধি পেলাম না| কোন লোক জন সেখানে নেই| কিন্তু তাঁবুর ভেতরে ঘোড়া, গাধা য়েমনকার তেমন বাঁধা আছে| অথচ লোক জন কেউ নেই, সব ফাঁকা|” 11 প্রহরীরা তখন চেঁচিয়ে রাজবাড়ীর লোকদের এখবর দিল| 12 কিন্তু তখন রাত্রি| রাজামশাই বিছানা ছেড়ে উঠে সেনাপতিদের বললেন, “আমি অরামীয় সেনাদের মতলবটা বুঝতে পেরেছি| ওরা জানে আমরা খুবই ক্ষুধার্ত| তাই তাঁবু ফাঁকা করে ঘাপটি মেরে মাঠে লুকিয়ে ভাবছে, ‘ইস্রায়েলীয়রা শহর থেকে এসে হানা দিলেই ওদের জ্য়ান্ত পাকড়াবো| তখন আবার আমাদের পিছু হটতে হবে|”‘ 13 রাজার এক জন সেনাপতি বলল, “পাঁচটা ঘোড়া নিয়ে গিয়ে কয়েক জন ব্যাপারটা সরেজমিনে দেখেই আসুক না! ঐ পাঁচটা ঘোড়া তো আমাদের মতোই শেষ অবধি না খেযে মরবে| কিন্তু আসল কথাটা জানা দরকার|” 14 তারা ঘোড়াসহ দুটি রথ বেছে নিল এবং রাজা তাদের অরামীয় সৈন্যবাহিনীর পরে পাঠালেন| তিনি বললেন, “যাও, দেখে এসো কি হয়েছে|” 15 এরা যর্দন নদীর তীর পর্য়ন্ত অরামীয় সেনাদের সন্ধানে গিয়ে দেখল, সারাটা পথে জামাকাপড় আর অস্ত্র শস্ত্র ছড়িয়ে আছে| তাড়াহুড়ো করে পালানোর সময় অরামীয় সেনারা এই সমস্ত জিনিস ফেলে গেছে| 16 সকলের জন্যই অপর্য়াপ্ত জিনিসপত্র ছড়িয়ে আছে| ঠিক য়েন প্রভু য়েমনটি বলেছিলেন, ‘এক পয়সায় এক টুক্রি মিহি মযদা আর দু-টুক্রি য়বের গুঁড়ো পাওয়া যাবে!’ 17 রাজা তাঁর ঘনিষ্ঠ এক জন সেনাপতিকে, সেই যিনি আগে স্বর্গ ছেঁদা করার কথা বলেছিলেন, শহরের দরজা আগলানোর দায়িত্ব দিলেন| কিন্তু ততক্ষণে লোকরা শএুশিবির থেকে খাবার আনার জন্য দৌড়েছে| উন্মত্ত জনতা সেই সেনাপতিকে ঠেলে, মাড়িয়ে, পিষে চলে গেল| রাজার বাড়ীতে দেখা করতে আসার পর ইলীশায় যা দৈব্বাণী করেছিলেন সে সবই অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল| 18 ইলীশায় বলেছিলেন, “য়ে কোন ব্যক্তি শমরিয়ার প্রবেশদ্বারে বাজার থেকে এক শেকলে এক ঝুড়ি মিহি মযদা অথবা দুই ঝুড়ি য়ব কিনতে পারে|” 19 কিন্তু ঐ আধিকারিক ঈশ্বরের লোককে উত্তর দিল, “এমনকি প্রভু যদি স্বর্গে জানালা তৈরী করেন, তবু এ ঘটনা ঘটবে না!” এবং ইলীশায় আধিকারিককে বললেন, “তুমি তোমার নিজের চোখে দেখবে, কিন্তু ঐ খাবার তুমি খাবে না|” 20 আধিকারিকের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটল, লোকেরা তাকে ধাক্কা মেরে ফটকের উপর ফেলে তার উপর দিয়ে হেঁটে গেল এবং সে মারা গেল|
1 এক দিন ইলীশায় সেই মহিলাটিকে ডাকলেন যার পুত্রকে তিনি বাঁচিয়ে তুলেছিলেন| তাকে বললেন, “তুমি ও তোমার বাড়ীর সবাই এই দেশ ছেড়ে চলে যাও, কারণ প্রভুর ইচ্ছানুসারে এখানে এখন সাত বছর ধরে দুর্ভিক্ষ চলবে|” 2 ভাব্বাদী ইলীশায়ের নির্দেশ মতো সেই মহিলা ও তার পরিবারের লোকরা দেশ ছেড়ে সাত বছর পলেষ্টীয়দের দেশে গিয়ে থাকল, 3 তারপর সাত বছর সময় কেটে গেলে আবার সেখান থেকে ফিরে এল|ফিরে আসার পর মহিলা মহারাজের কাছে তার জমি ও বাড়ি ফিরে পাবার ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনার জন্য কথাবার্তা বলতে যায়| 4 মহারাজ তখন ইলীশায়ের ভৃত্য গেহসির সঙ্গে কথা বলছিলেন| তিনি গেহসিকে জিজ্ঞেস করছিলেন, “ইলীশায় য়েসব অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটিয়েছেন, তুমি আমাকে সে সবের কথা বল|” 5 ইলীশায় কি ভাবে এক মৃত ব্যক্তিকে জীবনদান করেছিলেন গেহসি মহারাজকে সে কথা বলছিলেন| সে সময় এই মহিলা, যার ছেলেকে ইলীশায় বাঁচিয়ে তুলেছিলেন, জমি ও বাড়ীর ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা করতে রাজার সঙ্গে দেখা করতে গেল| তাকে দেখেই গেহসি বলে উঠল, “আমার মনিব এবং রাজা এ কি কাণ্ড! এই সেই মহিলা, আর ঐ সেই ছেলে যাকে ইলীশায় বাঁচিয়ে তুলেছিলেন!” 6 রাজা মহিলাকে, সে কি চায় তা জিজ্ঞেস করলে, মহিলা তাঁকে সব কিছু জানাল|রাজা এক রাজকর্মচারীকে ডেকে নির্দেশ দিলেন, “শোনো, ওর যা ন্যায্য প্রাপ্য তা ওকে ফিরিযে তো দেবেই, আর তাছাড়া ও য়েদিন থেকে দেশ ছেড়ে গিয়েছে, তার পরদিন থেকে ওর জমিতে উত্পন্ন শস্যও য়েন ওকে দেওয়া হয়|” 7 একবার অরামের রাজা বিন্হদদের অসুস্থতার সময় ইলীশায় দম্মেশকে আসেন| বিন্হদদকে এক জন একথা জানালে তিনি হসায়েলকে বললেন, 8 “একটা কোন উপহার নিয়ে গিয়ে এই ভাব্বাদীর সঙ্গে দেখা করে প্রভুকে জিজ্ঞেস করতে বলো, আমি সুস্থ হয়ে উঠব কি না|” 9 হসায়েল তখন দম্মেশকে যা যা ভাল জিনিসপত্র পাওয়া যায় উপহার হিসেবে সে সব নিয়ে ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| তিনি যা উপহার নিয়েছিলেন সে সব বয়ে নিয়ে য়েতে 40টা উট লেগেছিল! হসায়েল ইলীশায়কে গিয়ে বললেন, “আপনার অনুগামী অরামের রাজা বিন্হদদ আমাকে পাঠিয়েছেন| তাঁর জিজ্ঞাস্য, তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন কি না|” 10 তখন ইলীশায় হসায়েলকে বললেন, “তুমি গিয়ে বিন্হদদকে বল, ‘উনি বেঁচে থাকবেন,’ কিন্তু যদিও প্রভু আমাকে বলেছেন, ‘ওর মৃত্যু হবে|”‘ 11 ইলীশায় তারপর অনেক ক্ষণ একদৃষ্টে হসায়েলের দিকে তাকিযে থাকলেন| এতে হসায়েল লজ্জিত বোধ করছিলেন| এরপর ঈশ্বরের লোক কাঁদতে শুরু করলেন| 12 হসায়েল আর থাকতে না পেরে জিজ্ঞেস করলেন, “মহাশয আপনি কাঁদছেন কেন?”ইলীশায় বললেন, “আমি কাঁদছি, কারণ আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তুমি ইস্রায়েলীয়দের কি কি ক্ষতি করবে! তুমি তাদের সুদৃঢ় শহরগুলো পুড়িয়ে দেবে, ধারালো তরবারি দিয়ে একের পর এক ইস্রায়েলীয় যুবক ও শিশুকে হত্যা করবে, ওদের গর্ভবতী মহিলাদের কেটে দু টুকরো করবে|” 13 হসায়েল বললেন, “আমার সে অধিকার বা ক্ষমতা কোনটাই নেই! আমার দ্বারা এসব ভযঙ্কর কাজ কখনও হবে না!”ইলীশায় উত্তর দিলেন, “প্রভু আমাকে দেখালেন তুমি এক দিন অরামের রাজা হবে|” 14 তারপর হসায়েল ইলীশায়ের কাছ থেকে তার রাজার কাছে ফিরে এলে, বিন্হদদ প্রশ্ন করলেন, “ইলীশায় তোমাকে কি বললেন?” হসায়েল জবাব দিলেন, “আপনি বেঁচে থাকবেন|” 15 ঠিক তার পরের দিনই, হসায়েল একটা মোটা কাপড় জলে ডুবিয়ে, সেটাকে বিন্হদদের মুখের ওপর বিছিয়ে দিয়ে তাঁর শ্বাসরোধ করলেন| বিন্হদদের মৃত্যু হলে হসায়েল নতুন রাজা হলেন| 16 যিহোশাফটের পুত্র যিহোরাম ছিলেন যিহূদার রাজা| আহাবের পুত্র ইস্রায়েলের রাজা য়োরামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে যিহোরাম, যিহূদার সিংহাসনে বসেন| 17 তিনি যখন সিংহাসনে বসেন তখন তাঁর বয়স ছিল 32 বছর| যিহোরাম আট বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 18 কিন্তু যিহোরাম ইস্রায়েলের অন্যান্য রাজাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রভুর বিরুদ্ধে বহু পাপাচরণ করেন| যিহোরাম আহাবের পরিবারের লোকদের মতোই জীবনযাপন করতেন কারণ তাঁর স্ত্রী ছিলেন আহাবেরই কন্যা| 19 কিন্তু প্রভু তাঁর দাস দায়ূদকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীযিহূদাকে ধ্বংস করেন নি| প্রভু দায়ূদকে কথা দিয়েছিলেন সেখানে সব সময়ই তাঁর বংশের কেউ না কেউ রাজা হিসেবে শাসন করবে| 20 যিহোরামের রাজত্ব কালে ইদোম যিহূদার অধীনতা অস্বীকার করে, যিহূদার রাজত্ব থেকে ভেঙে বেরিয়ে যায় এবং সেখানকার লোকরা নিজেদের আলাদা রাজা ঠিক করে নেয| 21 তখন যিহোরাম তাঁর সমস্ত রথ নিয়ে সাযীরে গেলে, ইদোমীয় সৈন্যরা তাঁদের ঘিরে ফেলে| তখন যিহোরাম ও তাঁর সেনাপতিরা ইদোমীয়দের আক্রমণ করলেন এবং পালিয়ে গেলেন| যিহোরামের সেনারা সব পালিয়ে বাড়ি ফিরে যায়| 22 অর্থাত্ ইদোমীয়রা যিহূদার শাসন থেকে ভেঙ্গে বেরিয়ে এলো এবং আজ পর্য়ন্ত তারা স্বাধীন আছে|একই সময় লিব্নাও যিহূদার শাসন থেকে বেরিয়ে এসেছিল| 23 যিহোরাম যা যা করেছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 24 যিহোরামের মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল এবং নতুন রাজা হলেন যিহোরামের পুত্র অহসিয়| 25 আহাবের পুত্র য়োরামের ইস্রায়েলে রাজত্বের 12 বছরে যিহোরামের পুত্র অহসিয় যিহূদার রাজা হন| 26 অহসিয় যখন রাজা হন তাঁর বয়স ছিল 22 বছর| তিনি এক বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা অথলিয়া ছিলেন ইস্রায়েলের রাজা অম্রির নাতনি| 27 প্রভু যা যা নিষেধ করেছিলেন, আহাবের পরিবারবর্গের মতো সে সমস্ত খারাপ কাজই অহসিয় করেছিলেন| এর কারণ অহসিয়র স্ত্রী ছিলেন আহাবের পরিবারেরই মেয়ে| 28 য়োরাম ছিলেন আহাবের পরিবারের সদস্য| অহসিয় য়োরামকে নিয়ে রামোত্-গিলিয়দে অরামের রাজা হসায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে আহত হন| অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যখন তিনি যুদ্ধ করেছিলেন, অরামীয়রা রামোতে তাঁকে আহত করেছিলেন| সেই আঘাত থেকে সেরে ওঠার জন্য 29 রাজা য়োরাম ইস্রায়েলের য়িষ্রিযেলে চলে যান| যিহোরামের পুত্র যিহূদার রাজা অহসিয় তখন য়িষ্রিযেলে য়োরামকে দেখতে গিয়েছিলেন|
1 কয়েক জন তরুণ ভাব্বাদীকে ডেকে ইলীশায় বললেন, “তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নাও এবং এই ছোট তেলের শিশিটা নিয়ে রামোত্-গিলিয়দে যাও| 2 সেখানে গিয়ে নিম্শির পৌত্র যিহোশাফটের পুত্র য়েহূকে ওর ভাইদের মধ্যে থেকে তুলে তাকে ভেতরের ঘরে নিয়ে যাবে| 3 তারপর এই ছোট তেলের শিশিটা ওর মাথায় উপুড় করে দিয়ে বলবে, ‘প্রভু বলেছেন, আমি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হিসেবে তোমায় অভিষেক করলাম|’ একথা বলেই দরজা খুলে দৌড়ে চলে আসবে| আর অপেক্ষা করবে না!” 4 তখন এই তরুণ ভাব্বাদী রামোত্-গিলিয়দে গেল| 5 সেখানে সেনাবাহিনীর সমস্ত সেনাপতিরা বসে আছেন| তরুণ ভাব্বাদীটি বলল, “সেনাপতিমশাই আপনার জন্য খবর আছে|”য়েহূ বললেন, “আরে আমরা তো এখানে সবাই সেনাপতি! তুমি কার জন্য খবর এনেছো?”ভাব্বাদী বলল, “আপনারই জন্য!” 6 তখন য়েহূ উঠে বাড়ির ভেতরে গেলেন| তরুণ ভাব্বাদীটি সঙ্গে সঙ্গে য়েহূর মাথায় তেল ঢেলে দিয়ে বলল, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমি তোমাকে আমার ইস্রায়েলের সেবকদের নতুন রাজা হিসেবে অভিষেক করলাম| 7 তুমি তোমার রাজা আহাবের পরিবারকে ধ্বংস করবে| আমার ভৃত্যদের, ভাব্বাদীদের এবং প্রভুর সমস্ত সেবকদের হত্যা করবার জন্য আমি এই ভাবে ঈষেবলকে শাস্তি দেব| 8 আহাবের বংশের সকলকে মরতে হবে| ওর বংশের কোন পুরুষ শিশুকেও আমি জীবিত থাকতে দেব না| 9 ওর পরিবারের দশা আমি নবাটের পুত্র যারবিয়াম এবং অহিযের পুত্র বাশার পরিবারের মতো করব| 10 ঈষেবলকে কবরে সমাধিস্থ করা হবে না| য়িষ্রিযেলের রাস্তার কুকুর ওর দেহ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে|”একথা বলবার পর, তরুণ ভাব্বাদীটি দরজা খুলে দৌড়ে পালিয়ে গেল| 11 য়েহূ আবার রাজকর্মচারীদের মধ্যে ফিরে গেলে এক জন জিজ্ঞেস করলেন, “কি হে সব কিছু ঠিক আছে তো? ক্ষ্যাপাটা তোমার কাছে কেন এসেছিল?”য়েহূ ওঁর অধীনস্থদের বললেন, “লোকটা য়ে কি সব পাগলের প্রলাপ বকে গেল!” 12 সেনাপতিরা সকলে বললেন, “ও সব বললে হবে না| ও কি বলে গেল আমাদের সত্যি সত্যি বলতে হবে|” য়েহূ তখন তাঁদের তরুণ ভাব্বাদী কি বলেছে জানালেন, “ও বলল প্রভু বলেছেন, ‘আমি তোমায় ইস্রায়েলের নতুন রাজা হিসেবে অভিষেক করলাম|”‘ 13 তখন সেখানে উপস্থিত প্রত্যেকটি সেনাপতি তাঁদের পোশাক খুলে য়েহূর পাযের নীচে রাখলেন| তারপর তারা শিঙা বাজিযে চিত্কার করে উঠলেন, “য়েহূ হলেন রাজা!” 14 অতঃপর নিম্শির পৌত্র ও যিহোশাফটের পুত্র য়েহূ য়োরামের বিরুদ্ধে চএান্ত করলেন|সে সময় য়োরাম ও ইস্রায়েলীয়রা অরামের রাজা হসায়েলের হাত থেকে রামোত্-গিলিয়দ রক্ষা করতে চেষ্টা করছিলেন| 15 রাজা য়োরাম অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় অরামীয় সেনাবাহিনীর হাতে আহত হয়েছিলেন| তিনি (এ সময়) তাঁর ক্ষতস্থানের শুশ্রূষার জন্য য়িষ্রিযেলে ছিলেন|য়েহূ উপস্থিত রাজকর্মচারীদের সবাইকে বললেন, “তোমরা যদি সত্যি সত্যিই নতুন রাজা হিসেবে আমাকে মেনে নিয়ে থাকো, তাহলে খেযাল রেখো কেউ য়েন শহর থেকে পালিয়ে য়িষ্রিযেলে গিয়ে এ খবর দিতে না পারে|” 16 য়োরাম তখন য়িষ্রিযেলে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন| য়েহূ তাঁর রথে চড়ে য়িষ্রিযেলে গেলেন| যিহূদার রাজা অহসিয়ও সে সময় য়োরামকে দেখতে য়িষ্রিযেলে এসেছিলেন| 17 জনৈক প্রহরী তখন য়িষ্রিযেলের প্রহরা দেবার উচ্চ কক্ষে দাঁড়িয়েছিল| সদলবলে য়েহূকে আসতে দেখে ও চেঁচিয়ে বলল, “আমি এক দল লোক দেখতে পাচ্ছি!”য়োরাম বললেন, “এক জন ঘোড়সওযারকে ওদের সঙ্গে দেখা করতে পাঠাও| ওরা কিসের জন্য আসছে খোঁজ নিক|” 18 তখন ঘোড়সওযার এক জন বার্তাবাহক সেখানে গিয়ে য়েহূকে বলল, “রাজা এই কথা বললেন, ‘আপনি কি শান্তিতে এসেছেন?”‘য়েহূ বললেন, “শান্তি নিয়ে তোমার অতো মাথাব্যথা কিসের হে? আমাকে অনুসরণ করো|”প্রহরী য়োরামকে বললো, “ঘোড়া নিয়ে একজন খোঁজ নিতে গিয়েছে, কিন্তু এখনও ফেরে নি|” 19 য়োরাম তখন এক জনকে অশ্বারোহণে পাঠালেন| সে এসে বলল, “রাজা য়োরাম ‘শান্তি বজায় রাখতে চান|”‘য়েহূ উত্তর দিলেন, “শান্তি নিয়ে তোমার এতো মাথাব্যথা কিসের হে? আমাকে অনুসরণ করো|” 20 প্রহরী য়োরামকে খবর দিল, “পরের ঘোড়সওযারও এখনো ফিরে আসে নি| এদিকে নিম্শির পুত্র য়েহূর মত কে য়েন একটা পাগলের মত রথ চালিযে আসছে|” 21 য়োরাম বললেন, “আমার রথ নিয়ে এস|”তখন সেই ভৃত্য গিয়ে য়োরামের রথ নিয়ে এলে, ইস্রায়েলের রাজা য়োরাম ও যিহূদার রাজা অহসিয়, য়ে যার রথে চড়ে য়েহূর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| তাঁরা য়িষ্রিযেলের নাবোতের সম্পত্তির কাছে য়েহূর দেখা পেলেন| 22 য়োরাম য়েহূকে দেখতে পেয়ে বললেন, “তুমি বন্ধুর মতো এসেছো য়েহূ?”য়েহূ উত্তর দিলেন, “যতদিন তোমার মা ঈষেবল বেশ্যাবৃত্তি ও ডাইনিগিরি চালিযে যাবে ততদিন বন্ধুত্বের কোনো প্রশ্নই ওঠে না|” 23 পালানোর জন্য ঘোড়ার মুখ ঘোরাতে ঘোরাতে য়োরাম অহসিয়কে বললেন, “এ সমস্ত চএান্ত!” 24 কিন্তু ততক্ষণে য়েহূর সজোরে নিক্ষিপ্ত জ্য়ামুক্ত তীর গিয়ে য়োরামের পিঠে বিদ্ধ হয়েছে| এই তীর য়োরামের পিঠ ফুঁড়ে হৃত্পিণ্ডে গিয়ে ঢুকলো, রথের মধ্যেই য়োরামের মৃতদেহ লুটিযে পড়ল| 25 য়েহূ তাঁর রথের সারথি বিদ্করকে বললেন, “য়োরামের দেহ তুলে নাও এবং য়িষ্রিযেলের নাবোতের জমিতে ছুঁড়ে ফেলে দাও| মনে আছে, যখন তুমি আর আমি এক সঙ্গে য়োরামের পিতা আহাবের সঙ্গে ঘোড়ায় চড়ে আসছিলাম, প্রভু ভবিষ্যত্বাণী করেছিলেন, 26 ‘গতকাল আমি নাবোত আর ওর ছেলেদের রক্ত দেখেছি, তাই এই মাঠেই আমি আহাবকে শাস্তি দেব|’ প্রভুই একথা বলেছিলেন, অতএব যাও গিয়ে তাঁর ইচ্ছানুযাযী য়োরামের দেহ মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দাও|” 27 এসব কাণ্ড-কারখানা দেখে যিহূদার পিতা অহসিয় বাগানবাড়ির মধ্যে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতে য়েহূ তাঁর পিছু পিছু ধাওযা করতে করতে বললেন, “এটাকেও শেষ করে দিই!”রথে করে য়িব্লিযমের কাছাকাছি গূরে আসতে আসতে অহসিয়ও আহত হলেন এবং মগিদ্দোতে পালিয়ে এলেও সেখানেই তাঁর মৃত্যু হল| 28 অহসিয়র ভৃত্যরা রথে করে তাঁর মৃতদেহ জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে সেখানে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সমাধিস্থলে তাঁকে কবর দিল| 29 য়োরামের ইস্রায়েলে রাজত্ব কালের একাদশ বছরে অহসিয় যিহূদার রাজা হয়েছিলেন| 30 য়েহূ য়িষ্রিযেলে পৌঁছতে ঈষেবল সে খবর পেল| সে সেজেগুজে চুল বেঁধে জানালার ধারে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিযে দেখল, 31 য়েহূ শহরে ঢুকছে| ঈষেবল চেঁচিয়ে বলল, “কি হে সিম্রি! তুমিও একই ভাবে মনিব খুন করলে!” 32 য়েহূ ওপরে জানালার দিকে তাকিযে হাঁক দিলেন, “কে আমার পক্ষে আছো? কে?”দু-তিনজন নপুংসক প্রহরী জানালা দিয়ে মুখ বাড়াতেই 33 য়েহূ তাদের হুকুম দিলেন, “ওকে নীচে ফেলে দাও!”তখন নপুংসক প্রহরীরা ঈষেবলকে নীচে ছুঁড়ে ফেলে দিল| ঈষেবলের রক্তের ছিটে দেওয়ালে আর ঘোড়াদের গায়ে লাগল| ঘোড়ারা ঈষেবলের দেহ মাড়িয়ে চলে গেল| 34 য়েহূ বাড়ির ভেতরে গিয়ে পানাহার করে বললেন, “এই শাপগ্রস্তাকে এবার কবর দেবার ব্যবস্থা কর্ব হাজার হলেও রাজকন্যা তো বটে|” 35 ভৃত্যরা ঈষেবলকে কবর দিতে গিয়ে দেহের কোন হদিস পেল না| তারা কেবল ঈষেবলের মাথার খুলি, পাযের পাতা আর হাতের তালু খুঁজে পেল| 36 তারা ফিরে এসে য়েহূকে এ খবর দিতে য়েহূ বললেন, “প্রভু আগেই তাঁর দাস তিশ্বীর এলিয়কে জানিয়েছিলেন, ‘য়িষ্রিযেলের অধিকারভুক্ত অঞ্চলে কুকুররা ঈষেবলের দেহ খেযে নেবে| 37 একতাল গোবরের মত ঈষেবলের দেহ য়িষ্রিযেলের পথে পড়ে থাকবে, লোকরা দেখে চিনতেও পারবে না|”‘
1 আহাবের 70 জন ছেলে শমরিয়ায বাস করত| য়েহূ এই সমস্ত ছেলেদের যারা মানুষ করেছে তাদের, শমরিয়ার শাসকদের ও য়িষ্রিযেলের নেতাদের চিঠি লিখে পাঠালেন| 2 এই সমস্ত চিঠিতে লেখা হল: “এ চিঠি পাবার সঙ্গে সঙ্গেই আপনারা আপনাদের ভাইদের মধ্যে যাকে য়োগ্যতম বলে মনে করেন, তাকে তার পিতার সিংহাসনে বসিযে পিতৃকুলপতিদের আধিপত্যের জন্য সংগ্রাম শুরু করার জন্য প্রস্তুত হন| রথ আর ঘোড়া তো আপনাদের য়থেষ্টই আছে, উপরন্তু আপনারা সকলেই সুরক্ষিত শহরের মধ্যে বাস করেন!” 3 4 কিন্তু য়েহূর পাঠানো এই চিঠি পেয়ে য়িষ্রিযেলের নেতা ও শাসকবর্গ খুবই ভয পেয়ে গেল| তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি শুরু করল, “য়োরাম আর অহসিয় দুই রাজাই যখন য়েহূকে থামাতে পারল না, তখন আমরাই কি পারব?” 5 আহাবের বাড়ির চৌকিদার, নগরপাল, শহরের নেতা ও আহাবের সন্তানদের পালকপিতারা য়েহূকে খবর পাঠাল: “আমরা আপনার আজ্ঞাধীন দাসানুদাস| আপনি যা বলবেন আমরা তাই করতে রাজী আছি| আমরা নিজেদের কোন রাজা নির্বাচন করছি না, এবার আপনি যা ভাল মনে করবেন তাই করুন|” 6 য়েহূ তখন এই সমস্ত নেতাদের দ্বিতীয় এক চিঠিতে নির্দেশ দিলেন, “আপনারা সত্যি সত্যিই যদি আমাকে সমর্থন করেন এবং আমার বশ্যতা স্বীকার করেন তাহলে আহাবের ছেলেদের মুণ্ডুগুলো কেটে আগামীকাল এই সময় আমার কাছে, য়িষ্রিযেলে নিয়ে আসবেন|”আহাবের 70 জন ছেলে ঐ শহরেই নেতাদের সঙ্গে বাস করত যারা তাদের প্রতিপালন করেছিল| 7 শহরের নেতারা এই চিঠি পেয়ে 70 জন রাজপুত্রকে হত্যা করে তাদের মুণ্ডুগুলো টুক্রিতে রাখলেন| তারপর সেই টুক্রিগুলো য়িষ্রিযেলে য়েহূর কাছে পাঠিয়ে দিলেন| 8 বার্তাবাহক এসে য়েহূকে খবর দিল, “তারা রাজপুত্রদের মুণ্ডুগুলো নিয়ে এসেছে!”তখন য়েহূ বললেন, “ঐ কাটা মুণ্ডুগুলো কাল সকাল পর্য়ন্ত শহরের ফটকে দুটো গাদা করে সাজিযে রাখ|” 9 সকাল বেলা য়েহূ গিয়ে লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমরা সকলেই নির্দোষ| আমি আমার অন্নদাতার বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে হত্যা করেছি| কিন্তু আহাবের এই সমস্ত ছেলেদের কে হত্যা করল? তোমরা! 10 শোন, মনে রেখো প্রভু যা বলেন তা অবশ্যই হবে| আহাবের পরিবারের পরিণতি সম্পর্কে প্রভু আগেই এলিয়র মাধ্যমে এই সব কথা ভবিষ্যত্বাণী করেছিলেন| এখন তিনি তা শুধু কাজে পরিণত করলেন|” 11 শেষ পর্য়ন্ত য়েহূ য়িষ্রিযেলে বসবাসকারী আহাবের পরিবারের সমস্ত সদস্য, আহাবের ঘনিষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, বন্ধুবান্ধব, যাজকবর্গ সকলকেই হত্যা করলেন| আহাবের কোন নিকট জনই রক্ষা পেল না| 12 এরপর য়েহূ য়িষ্রিযেল থেকে শমরিয়ায গেলেন| পথে ‘মেষপালকদের আড্ডা’ বলে একটা জায়গায় যেখানে মেষপালকরা মেষদের গা থেকে লোম ছাড়াত, থামলেন| 13 য়েহূ যিহূদার রাজা অহসিয়র আত্মীযস্বজনদের সঙ্গে দেখা করে বললেন, “তোমরা কারা?”তারা উত্তর দিল, “আমরা সকলেই যিহূদার রাজা অহসিয়র আত্মীয| আমরা সকলে মহারাজ আর রাণীমার ছেলেপুলেদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাত্ করতে এসেছি|” 14 য়েহূ তখন তাঁর দলবলকে নির্দেশ দিলেন, “এগুলোকে জ্য়ান্ত ধর|”য়েহূর লোকরা তখন অহসিয়ের 42 জন আত্মীযস্বজনকে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে মেষলোমচ্ছেদক গৃহের কুযোর কাছে হত্যা করল, কেউই রক্ষা পেল না| 15 সেখান থেকে যাবার পথে রেখবের পুত্র যিহোনাদবের সঙ্গে য়েহূর দেখা হল| যিহোনাদব তখন য়েহূর সঙ্গেই দেখা করতে আসছিলেন| য়েহূ তাঁকে অভিবাদন জানিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি য়ে রকম আপনাকে বিশ্বাসী বন্ধু বলে মনে করি, আপনিও কি আমাকে তাই করেন?”যিহোনাদব উত্তর দিলেন, “অবশ্যই! আমিও আপনার বিশ্বাসী বন্ধু|”য়েহূ বললেন, “তাই যদি হয় তবে আপনি আমার হাতে হাত রাখুন|”এই বলে নিজের হাত বাড়িযে দিয়ে যিহোনাদবকে নিজের রথে টেনে তুললেন| 16 য়েহূ বললেন, “আমার সঙ্গে চলুন| দেখতেই পাচ্ছেন প্রভুর প্রতি আমার অবিচল ভক্তি আছে|”যিহোনাদব তখন য়েহূর রথে চড়েই রওনা হলেন| 17 শমরিয়ায এসে য়েহূ আহাবের পরিবারের অবশিষ্ট জীবিত ব্যক্তিবর্গকে হত্যা করলেন| প্রভু এলিয়র কাছে য়ে ভবিষ্যত্বাণী করেছিলেন ঠিক সে ভাবেই য়েহূ আহাবের পরিবারের সবাইকে হত্যা করলেন, কাউকে রেহাই দিলেন না| 18 তারপর য়েহূ সমস্ত লোকদের জড়ো করে বললেন, “আহাব আর বাল মূর্ত্তির জন্য কি এমন কাজ করেছিলেন, য়েহূ তার থেকে অনেক বেশি করবে! 19 বাল মূর্ত্তির সমস্ত ভক্ত, ভাব্বাদী আর যাজকদের ডেকে নিয়ে এস, যাও| দেখো কেউ আবার য়েন বাদ না পড়ে! বাল মূর্ত্তির চরণে আমি এক মহার্য়্ঘ বলিদান করতে চাই| এই অনুষ্ঠানে য়ে আসবে না আমি তাকে হত্যা করব!”আসলে এটা য়েহূর একটা চাল ছিল, তিনি বালপূজকদের ধ্বংস করতে চাইছিলেন| 20 য়েহূ বললেন, “বাল মূর্ত্তির জন্য এক পবিত্র অনুষ্ঠানের আয়োজন করো|” যাজকরা সেই য়জ্ঞের দিন ঘোষণা করল| 21 যখন য়েহূ সমগ্র ইস্রায়েলে এ খবর জানিয়ে দিলেন, বাল মূর্ত্তির সমস্ত পূজারীরা সেখানে এসে হাজির হল, কেউই বাড়ীতে পড়ে থাকল না| তারা সকলে এসে বাল মূর্ত্তির মন্দিরে উপস্থিত হলে বালের মন্দির কানায় কানায় ভরে গেল| 22 য়েহূ বস্ত্রাগারের অধ্যক্ষকে বাল মূর্ত্তির সমস্ত পূজকদের জন্য পূজার বিশেষ পোশাক বের করার নির্দেশ দিতে, সেই লোকটি সে সব বের করে নিয়ে এল| 23 তখন য়েহূ আর রেখবের পুত্র যিহোনাদব দুজনে মিলে বাল মূর্ত্তির মন্দিরে গেলেন| য়েহূ ভক্তদের বললেন, “দেখো মন্দিরে য়েন শুধুমাত্র বাল মূর্ত্তির ভক্তরাই থাকে|” 24 বাল মূর্ত্তির ভক্তরা য়জ্ঞে আহুতি দিতে ও বলিদান করতে সবাই মিলে মন্দিরের ভেতরে গেল|এদিকে মন্দিরের বাইরে য়েহূ 80 জন প্রহরীকে দাঁড় করিযে রেখেছিলেন| তিনি তাদের বললেন, “দেখো কেউ য়েন পালাতে না পারে| কারোর দোষে যদি এক জনও পালিয়ে যায় তো আমি তাকে হত্যা করব|” 25 য়েহূ হোমবলিতে জলসিঞ্চন করে উত্সর্গের কাজ শেষ করলেন এবং তাঁর সেনাপতিদের আর প্রহরীদের আদেশ দিয়ে বললেন, “এখন যাও আর বাল মূর্ত্তির পূজকদের মেরে ফেল| কেউ য়েন মন্দির থেকে প্রাণ নিয়ে বেরোতে না পারে!”তখন সেনাপতিরা তাদের তীক্ষ্ণ তরবারি দিয়ে বাল মূর্ত্তির সমস্ত পূজকদের হত্যা করল| তারা ও রক্ষীরা মিলে পূজকদের মৃতদেহগুলো ছুঁড়ে ছুঁড়ে বাইরে ফেলল| তারপর প্রহরী ও সেনাপতিরা মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকে 26 পাথরের ফলক ও স্মরণ স্তম্ভ বের করে এনে সেগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে মন্দিরটাকে পুড়িয়ে দিল| 27 তারপর তারা বালের স্মরণস্তম্ভ এবং বালের মন্দির ভেঙ্গে ফেলল, তারা মন্দিরটাকে ধ্বংস করে তার জায়গায় একটা বিশ্রামাগার বানালো| লোকরা এখনও সেটাকে শৌচালয হিসেবে ব্যবহার করে| 28 এই ভাবে য়েহূ ইস্রায়েলে বাল মূর্ত্তির পূজো বন্ধ করলেন| 29 কিন্তু তা সত্ত্বেও, নবাটের পুত্র যারবিয়াম য়ে সমস্ত পাপ কাজ করতে ইস্রায়েলের লোকদের বাধ্য করেছিলেন সে সমস্ত পাপ কাজ য়েহূ অব্যাহত রাখলেন| তিনি বৈথেল ও দানের সেই সোনার বাছুর দুটোকে ধ্বংস করেন নি| 30 প্রভু য়েহূকে বললেন, “তুমি খুব ভাল কাজ করেছো| আমি যা ভাল বলেছিলাম তুমি তাই করলে| য়ে ভাবে আমি আহাবের পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলাম তুমি ঠিক সে ভাবেই তাদের ধ্বংস করেছো| এই জন্য তোমার উত্তরপুরুষরা চার পুরুষ ধরে ইস্রায়েলে শাসন করবে|” 31 কিন্তু য়েহূ সমস্ত হৃদয় দিয়ে প্রভুর বিধি-নির্দেশ পালন করেন নি| যারবিয়াম ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের য়ে সব পাপাচরণে বাধ্য করেছিলেন তা তিনি বন্ধ করতে পারেন নি| 32 প্রভু এসময় ইস্রায়েল থেকে টুকরো টুকরো ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন করছিলেন| ইস্রায়েলের প্রত্যেক সীমান্তেই অরামের রাজা হসায়েলের হাতে ইস্রায়েলীয় বাহিনী পরাজিত হল| 33 যর্দন নদীর পূর্ব তীরে গিলিয়দের সমগ্র অঞ্চল ছাড়াও গাদীয, রূবেণীয ও মনঃশীযদের পরিবারগোষ্ঠীর দেশ, অর্ণোন উপত্যকার কাছে অরোয থেকে গিলিয়দ ও বাশন পর্য়ন্ত সমস্ত অঞ্চল হসায়েল দখল করে নিলেন|য়েহূর মৃত্যু 34 য়েহূ আর যা কিছু স্মরণীয কাজ করেছিলেন সে সমস্ত কিছুই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করা আছে| 35 য়েহূ মারা গেলেন এবং তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শমরিয়ায সমাধিস্থ করা হয়েছিল| তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র যিহোয়াহস ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন| 36 য়েহূ শমরিয়াতে ইস্রায়েলের উপর 28 বছর রাজত্ব করেছিলেন|
1 অহসিয়ের মা অথলিয়া যখন দেখলেন তাঁর পুত্র মারা গিয়েছে, তিনি তখন উঠে রাজ পরিবারের সবাইকে হত্যা করলেন| 2 যিহোশেবা ছিলেন রাজা য়োরামের কন্যা, অহসিয়ের বোন| তিনি যখন দেখলেন সমস্ত রাজপুত্রদের হত্যা করা হচ্ছে, তখন অহসিয়ের এক পুত্র য়োয়াশকে নিয়ে একটা শয়ন ঘরে এক জন পরিষেবিকার সঙ্গে লুকিয়ে রাখলেন| অতএব তাঁরা য়োয়াশকে অথলিয়ার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখলেন এবং এই ভাবে সে নিহত হল না| 3 এরপর অথলিয়া যিহূদায় ছ’বছর রাজত্ব করেন| সে সময় য়োয়াশকে নিয়ে যিহোশেবা প্রভুর মন্দিরে লুকিয়ে থাকেন| 4 সপ্তম বছরে প্রভুর মন্দিরের মহাযাজক যিহোয়াদা রাজার বিশেষ দেহরক্ষীদের প্রধান ও প্রধান সেনাপতিকে এক সঙ্গে মন্দিরে ডেকে পাঠালেন| তারপর প্রভুর সামনে গোপনীয়তা রক্ষার প্রতিশ্রুতি করিযে যিহোয়াদা তাঁদের রাজপুত্র যোয়াশের সঙ্গে সাক্ষাত্ করালেন| 5 অতঃপর যিহোয়াদা তাঁদের নির্দেশ দিয়ে বললেন, “একটা কাজ তোমাদের করতেই হবে| তোমাদের দলের এক-তৃতীয়াংশ প্রত্যেকটা বিশ্রামের দিনের শুরুতে এসে রাজাকে তাঁর বাড়িতে পাহারা দেবে| 6 আর এক-তৃতীয়াংশ সূর দরজার কাছে থাকবে| আর বাকি এক-তৃতীয়াংশ দরজার কাছে প্রহরীদের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকবে| 7 প্রত্যেকটা বিশ্রামের দিন শেষ হলে তোমাদের দুই-তৃতীয়াংশ প্রভুর মন্দির ও রাজা য়োয়াশকে পাহারা দেবে| 8 তিনি কোথাও গেলে তোমরা সবসময়ে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থাকবে| পুরো দলটাই য়েন সশস্ত্র থাকে এবং রাজাকে সবসময়ে ঘিরে থাকে| সন্দেহ জনক কাউকে দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে তাকে হত্যা করবে|” 9 সেনাপতিরা যাজক যিহোয়াদার সমস্ত নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন| প্রত্যেক সেনাপতি তাঁর লোকসকল নিয়ে শনিবারে একটা দল রাজাকে পাহারা দেবে বলে কথা হল, আর বাদবাকি সপ্তাহ আরেকটা দল পাহারা দেবার কথা ঠিক হল| এই সমস্ত সৈনিক যাজক যিহোয়াদার কাছে গেলে 10 তিনি তাঁদের প্রভুর মন্দিরে দায়ূদের রাখা বর্শা ও ঢাল দিলেন| 11 প্রহরীরা সকলে সশস্ত্র অবস্থায় মন্দিরের ডান কোণ থেকে বাঁ কোণ পর্য়ন্ত, বেদীর চারপাশে এবং রাজা যখনই কোথাও বেরোতেন তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকত| 12 এরা সকলে য়োয়াশকে বের করে তাঁর মাথায় মুকুট পরিযে, তাঁর হাতে রাজা ও ঈশ্বরের চুক্তিপত্রটি তুলে দিল| তারপর মাথায় মন্ত্রপূতঃ তেল ঢেলে তাঁকে রাজপদে অভিষেক করে হাততালি দিয়ে সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল, “মহারাজের জয় হোক!” 13 মহারাণী অথলিয়া সৈনিক ও লোকদের কোলাহল শুনে প্রভুর মন্দিরে গিয়ে দেখলেন, 14 সেখানে স্তম্ভের কাছে যেখানে রাজাদের দাঁড়ানোর কথা, রাজা দাঁড়িয়ে আছেন এবং নেতারা সকলে তাঁকে ঘিরে শিঙা বাজাচ্ছেন| সকলকে খুব খুশী দেখতে পেয়ে মর্মাহত রাণী শোক প্রকাশের জন্য নিজের পরিধেয পোশাক ছিঁড়ে ফেলে চিত্কার করে উঠলেন, “বিদ্রোহ, বিদ্রোহ!” 15 যিহোয়াদা তখন সেনাপতিদের নির্দেশ দিয়ে বললেন, “অথলিয়াকে মন্দির চত্বরের বাইরে নিয়ে যাও| তাঁর সমর্থকদের যাকে খুশী তুমি মারতে পারো, কিন্তু প্রভুর মন্দিরের বাইরে| কারণ যাজক বলেছিলেন, “তাঁকে য়েন মন্দিরে হত্যা না করা হয়|” 16 একথা শুনে সৈনিকরা অথলিয়াকে চেপে ধরল| তারপর তিনি রাজপ্রাসাদের ঘোড়া ঢোকার দিকের দরজা পার হতে না হতেই তাঁকে হত্যা করলো| 17 যিহোয়াদা তখন প্রভু রাজা ও প্রজাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করে একটি চুক্তি করলেন| এই চুক্তিতে বলা হল, রাজা ও প্রজা উভয়েই প্রভুর আশ্রিত| এছাড়াও এই চুক্তিপত্রে রাজা ও প্রজার পরস্পরের প্রতি কর্তব্য নির্ধারিত হল| 18 এরপর সমস্ত লোক এক সঙ্গে বালদেবতার মন্দিরে গিয়ে বালদেবতার মূর্ত্তি ও বেদীগুলো ধ্বংস করল| বেদীগুলোকে টুকরো টুকরো করে ভাঙ্গবার পর, তারা বালদেবতার যাজক মত্তনকেও হত্যা করল|এরপর যিহোয়াদা মন্দিরের দেখাশোনা করবার জন্য আধিকারিকদের রাখলেন| 19 সবাইকে নেতৃত্ব দিয়ে মন্দির থেকে রাজপ্রাসাদে নিয়ে গেলেন| রাজার বিশেষ দেহরক্ষী ও সেনাপতিরা রাজার সঙ্গে গেলেন| সবাই মিলে রাজপ্রাসাদের প্রবেশ পথে পৌঁছালে রাজা য়োয়াশ সিংহাসনে গিয়ে বসলেন| 20 সমস্ত লোকরা তখন খুবই খুশী হল| শহরে শান্তি ফিরে এল| কারণ রাণী অথলিয়াকে তরবারি দিয়ে রাজপ্রাসাদের কাছেই হত্যা করা হয়েছিল| 21 য়োয়াশ যখন রাজা হন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র সাত বছর|
1 ইস্রায়েলে য়েহূর রাজত্বের সপ্তম বছরে সিংহাসনে আরোহণ করার পর, য়োয়াশ 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন| যোয়াশের মা ছিলেন বের্-শেবা নিবাসিনী সিবিযা| 2 য়োয়াশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেন| রাজা য়োয়াশ ঈশ্বরের সামনে ঠিক কাজগুলি করেছিলেন যতদিন তাঁকে যিহোয়াদা নির্দেশ দিয়েছিলেন| 3 তবে তিনিও ভিন্ন মূর্ত্তির পূজোর জন্য উঁচু জায়গায় বানানো বেদীগুলো ধ্বংস করেন নি| লোকরা সেই সব বেদীগুলিতে বলিদান করা ও ধুপধূনো দেওয়া চালিযে গেল| 4 য়োয়াশ যাজকদের বললেন, “প্রভুর মন্দিরে কোন অর্থাভাব নেই| মন্দিরে জিনিসপত্র দান করা ছাড়াও, সময় সময় লোকরা মন্দির করও দিয়ে এসেছে| খুশি মত উপহার তারা দিয়েছে| 5 আপনারা, যাজকরা মন্দির মেরামতের জন্য ঐ অর্থ ব্যবহার করবেন| প্রত্যেক যাজক লোকেদের জন্য কাজ করে, তাদের কাছ থেকে য়ে দক্ষিণা পান সেই টাকা দিয়েই তাদের প্রভুর মন্দির সংস্কার করা উচিত্|” 6 কিন্তু যাজকরা মন্দির সংস্কার করলেন না| যোয়াশের রাজত্বের 23 বছরের মাথায়ও যখন যাজকরা মন্দির সারালেন না, 7 তখন রাজা য়োয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে পাঠিয়ে জানতে চাইলেন, “আপনারা কেন এখনও মন্দিরটা সারান নি? অবিলম্বে আপনারা লোকদের কাজ করে দক্ষিণা নেওয়া বন্ধ করুন| দক্ষিণার টাকাও আর বাজে খরচ করবেন না| ঐ টাকা অবশ্যই মন্দির সংস্কারের কাজে যাওয়া উচিত্|” 8 যাজকরা লোকদের কাছ থেকে দক্ষিণা নেওয়া বন্ধ করবেন বলে রাজী হলেও, তাঁরা ঠিক করলেন য়ে মন্দির তাঁরা সারাবেন না| 9 তখন যাজক যিহোয়াদা একটা বা) বানিয়ে বা)টার ওপরে একটা ফুটো করে সেটাকে বেদীর দক্ষিণ দিকে, য়ে দরজা দিয়ে দর্শনার্থীরা মন্দিরে ঢোকে, রেখে দিলেন| কিছু যাজক মন্দিরের দরজা আগলে বসে থাকতেন| তারা প্রভুকে প্রণামী হিসেবে দেওয়া টাকা পয়সাগুলো ঐ বা)টায পুরে দিলেন| 10 এরপর থেকে লোকরাও মন্দিরে এলে ঐ বা)টার মধ্যে টাকা পয়সা ফেলতে শুরু করল| যখনই মহারাজের সচিব এবং যাজক দেখতেন বা)টার মধ্যে অনেক টাকা পয়সা জমে গিয়েছে, তাঁরা তখন সমস্ত টাকা পয়সা বা) থেকে বের করে গুণে গেঁথে ব্যাগে ভরে রাখতেন| 11 তাঁরা ঐ অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের কাঠের মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, 12 পাথর-কাটিযে, খোদাইকর ও অন্যান্য য়েসব মিস্ত্রিরা প্রভুর মন্দিরে কাজ করত তাদের মাইনে দিতেন| এছাড়াও ঐ টাকা দিয়ে মন্দির সারানোর জন্য কাঠের গুঁড়ি, পাথর থেকে শুরু করে যা যা প্রয়োজন কিনতেন| 13 প্রভুর মন্দিরের জন্য লোকরা য়ে টাকা দিতেন তা দিয়ে কিন্তু যাজকরা সোনা ও রূপোর পাত্র, বাতিদান, বাদ্যযন্ত্র এসব কিনতে পারতেন না| 14 কারণ কারিগররা যারা মন্দির সারাচ্ছিল তাদের মাইনে ঐ অর্থ থেকে দেওয়া হত| 15 কেউই পাই পয়সার হিসেব নিতেন না বা ‘টাকা কিভাবে খরচ হল’- এ প্রশ্ন মিস্ত্রিদের করতেন না| কারণ সমস্ত মিস্ত্রিরা খুব বিশ্বাসী ছিল| 16 দোষ মোচন ও পাপমোচনের নৈবেদ্যর থেকে পাওয়া টাকা কারিগরদের মাইনে দেবার জন্য ব্যবহৃত হত না কারণ ওটাতে ছিল যাজকদের অধিকার| 17 অরামের রাজা হসায়েল গাত্ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন| গাতদের হারানোর পর হসায়েল জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন| 18 যিহোশাফট, যিহোরাম, অহসিয় প্রমুখ যিহূদার রাজারা ছিলেন য়োরামের পূর্বপুরুষ| এরা সকলেই প্রভুকে অনেক কিছু দান করেছিলেন| সে সব জিনিসই মন্দিরে রাখা ছিল| য়োয়াশ নিজেও প্রভুকে বহু জিনিসপত্র দিয়েছিলেন| জেরুশালেমকে অরামের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য য়োয়াশ এইসমস্ত জিনিসপত্র এবং তাঁর বাড়িতে ও মন্দিরে যত সোনা ছিল, সব কিছুই অরামের রাজা হসায়েলকে পাঠিয়ে দেন| 19 য়োয়াশ য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সমস্ত ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 20 যোয়াশের কর্মচারীরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে সিল্লা যাবার পথে মিল্লো বলে একটা বাড়িতে হত্যা করে| 21 শিমিয়তের পুত্র য়োষাখর ও শোমরের পুত্র যিহোষাবদ আধিকারিক ছিল| এই দুজন মিলে য়োয়াশকে হত্যা করেছিল| য়োয়াশকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করার পর তাঁর পুত্র অমত্সিয নতুন রাজা হলেন|
1 অহসিয়ের পুত্র, যোয়াশের যিহূদায় রাজত্বের 23তম বছরে য়েহূর পুত্র যিহোয়াহস শমরিয়ায ইস্রায়েলের নতুন রাজা হয়েছিলেন এবং তিনি 17 বছর রাজত্ব করেছিলেন| 2 প্রভু যা কিছু করতে বারণ করেছিলেন, যিহোয়াহস সে সবই করেছিলেন| নবাটের পুত্র যারবিয়াম য়ে সমস্ত পাপাচরণ করতে ইস্রায়েলের লোকদের বাধ্য করেছিলেন, যিহোয়াহস সেই সমস্ত পাপাচরণ করেছিলেন| তিনি সেই সব কাজ বন্ধ করলেন না| 3 প্রভু তখন ইস্রায়েলের প্রতি বিরূপ হয়ে, ইস্রায়েলকে অরামের রাজা হসায়েল ও তাঁর পুত্র বিন্হদদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন| 4 যিহোয়াহস তখন প্রভুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে, প্রভু সেই ডাকে সাড়া দিলেন| প্রভু ইস্রায়েলের বিপদ সচক্ষে দেখা ছাড়াও অরামের রাজা কি ভাবে ইস্রায়েলীয়দের অত্যাচার করছে দেখেছিলেন| 5 তখন প্রভু ইস্রায়েলকে বাঁচানোর জন্য এক ব্যক্তিকে পাঠালেন| অরামীয়দের হাত থেকে মুক্ত হয়ে ইস্রায়েলীয়রা আগের মত নিজেদের বাড়ি ফিরে গেল| 6 কিন্তু তা সত্ত্বেও যারবিয়াম য়ে সকল পাপ দ্বারা ইস্রায়েলীয়দের পাপাচরণে বাধ্য করেছিলেন, তাঁরা সে সকল পাপাচরণ বন্ধ করল না, কিন্তু আশেরার মূর্ত্তিকে শমরিয়াতে থাকতে দিল| 7 অরামের রাজা যিহোয়াহসের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছিলেন| সেনাবাহিনীর অধিকাংশ ব্যক্তিকেই হত্যা করেছিলেন| তিনি কেবলমাত্র 50 জন অশ্বারোহী সৈনিক, 10 খানা রথ ও 10,000 পদাতিক সৈন্য অবশিষ্ট রেখেছিলেন| যিহোয়াহসের বাদবাকি সেনাবাহিনী য়েন ঝড়ের মুখে খড় কুটোর মত উড়ে গিয়েছিল! 8 যিহোয়াহস য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন তা ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 9 যিহোয়াহসের মৃত্যুর পর লোকরা তাঁকে শমরিয়ায তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করেছিল| যিহোয়াহসের পর তাঁর পুত্র য়োয়াশ নতুন রাজা হলেন| 10 যিহূদায় যোয়াশের রাজত্বের 37তম বছরে শমরিয়ায যিহোয়াহসের পুত্র যিহোয়াশ ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন| তিনি মোট 16 বছর ইস্রায়েল শাসন করেন| 11 প্রভু যা কিছু বারণ করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াস সে সমস্তই করেন| নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতোই তিনি ইস্রায়েলের লোকদের পাপের পথে চালিত করেন| 12 য়োয়াশ য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন এবং অমত্সিযের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধের ব্বিরণ ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 13 যিহোয়াসের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শমরিয়ায সমাধিস্থ করা হয়| যিহোয়াসের মৃত্যুর পর যারবিয়াম নতুন রাজা হয়ে যোয়াশের সিংহাসনে বসেন| 14 ইলীশায় অসুস্থ হয়ে পড়লেন| পরে এই অসুস্থতায ইলীশায় মারা গেলেন| ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ তাঁকে দেখতে গেলেন| সেখানে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে যিহোয়াশ বললেন, “হে আমার পিতা, আমার পিতা! স্বর্গ থেকে কখন ঈশ্বরের পাঠানো ঘোড়ায়-টানা রথ এসে তোমাকে তুলে নিয়ে যাবে?” 15 ইলীশায় যিহোয়াশকে বললেন, “তীর ধনুক হাতে নাও|”তার কথা মতো যিহোয়াশ একটা ধনুক ও কিছু তীর নিলেন| 16 তখন ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “এবার তোমার হাতে ধনুক রাখো|” যিহোয়াশ ধনুকে হাত রাখার পর ইলীশায় তার হাত রাজার হাতের ওপর রাখলেন| 17 ইলীশায় বললেন, “পূর্বদিকের জানালাটা খুলে দাও|” কথা মতো যিহোয়াশ জানালা খুলে দিলেন| ইলীশায় নির্দেশ দিলেন, “তীর নিক্ষেপ কর|”যিহোয়াশ তীর ছুঁড়লেন| তখন ইলীশায় বলে উঠলেন, “ঐ তীর হল প্রভুর বিজয় বাণ! অরামের বিরুদ্ধে বিজয় বাণ! তুমি অবশ্যই অফেকে অরামীয়দের যুদ্ধে হারাতে ও ধ্বংস করতে পারবে|” 18 এরপর ইলীশায় আবার বললেন, “তীর নাও|” যিহোয়াশ তীর নিলে ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে নির্দেশ দিলেন, “তীরগুলি দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর|”যিহোয়াশ পরপর তিন বার ভূমিতে তীর দিয়ে আঘাত করলেন, তারপর তিনি থামলেন| 19 ইলীশায় রেগে গিয়ে বললেন, “তোমার অন্তত পাঁচ-ছ’বার ভূমিতে তীর দিয়ে আঘাত করা উচিত্ ছিল| তাহলে তুমি অরামীয় সেনাদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারতে! কিন্তু এখন তুমি ওদের শুধু মাত্র তিন বার যুদ্ধে হারাতে পারবে!” 20 ইলীশায়ের মৃত্যু হলে লোকরা তাকে সমাধিস্থ করল| একবার বসন্তকালে, একদল মোয়াবীয় সৈন্য ইস্রায়েল আক্রমণ করল| 21 ইস্রায়েলীয় কিছু ব্যক্তি সে সময়ে একটি শবদেহ সমাধিস্থ করতে যাচ্ছিল| তারা মোয়াবীয় সেনাদের দেখে ঐ শবদেহটি ইলীশায়ের কবরে ছুঁড়ে ফেলে পালিয়ে গেল| কিন্তু য়েই মূহুর্তে এই মৃতদেহটি ইলীশায়ের অস্থি স্পর্শ করল, সেই মূহুর্তে সেই লোকটি বেঁচে উঠে দাঁড়াল| 22 যিহোয়াশের রাজত্বের সময় অরামের রাজা হসায়েল নানা ভাবে ইস্রায়েলকে বিপাকে ফেলেছেন| 23 কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের প্রতি প্রভুর কৃপা দৃষ্টি ছিল| তিনি করুণাবশতঃ ইস্রায়েলীয়দের পক্ষ গ্রহণ করেছিলেন| অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন বলে প্রভু ইস্রায়েলীয়দের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেন নি| 24 অরামের রাজা হসায়েলের মৃত্যু হলে বিন্হদদ সে জায়গায় নতুন রাজা হলেন| 25 মৃত্যুর আগে হসায়েল, যিহোয়াশ ও যিহোয়াহসের পিতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বেশ কয়েকটা শহর জিতে নিয়েছিলেন| যিহোয়াশ, হসায়েলের পুত্র বিন্হদদের কাছ থেকে সেগুলো পুনরুদ্ধার করলেন| যিহোয়াশ বিন্হদদকে তিনবার যুদ্ধে পরাজিত করে, ইস্রায়েলের হৃত শহরগুলি পুনর্দখল করেন|
1 যিহোয়াহসের পুত্র যিহোয়াশের ইস্রায়েলে শাসনের দ্বিতীয় বছরে যিহূদায় রাজা যোয়াশের পুত্র অমত্সিয নতুন রাজা হলেন| 2 পঁচিশ বছর বযসে যিহূদার রাজা হবার পর অমত্সিয মোট 29 বছর জেরুশালেমে শাসন করেন| অমত্সিযের মা ছিলেন জেরুশালেমের যিহোযদ্দিন| 3 অমত্সিয প্রভুর নির্দেশিত পথে চললেও তিনি দায়ূদের মত একনিষ্ঠভাবে ঈশ্বরের সেবা করেন নি| তাঁর পিতা যিহোয়াশ যা যা করতেন, অমত্সিযও তাই করতেন| 4 তিনি মূর্ত্তির উচ্চস্থানগুলি ধ্বংস করেন নি| এমনকি তাঁর রাজত্ব কালেও সেখানে লোকেরা বলিদান করত ও ধুপধূনো দিত| 5 তাঁর সমস্ত বিরোধীদের সরিয়ে দিয়ে অমত্সিয রাজ্যের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখলেন| য়ে সমস্ত আধিকারিকরা তাঁর পিতাকে হত্যা করেছিল, অমত্সিয তাদের প্রাণদণ্ড দিয়েছিলেন| 6 কিন্তু এই সমস্ত ঘাতকদের হত্যা করলেও তিনি তাদের সন্তানদের নিষ্কৃতি দিয়েছিলেন কারণ মোশির বিধিপুস্তকে লিখিত আছে: “সন্তানের অপরাধের জন্য পিতামাতাকে য়েমন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না, তেমনই পিতামাতার অপরাধের জন্য কোন সন্তানের মৃত্যুদণ্ড দেওয়াও ঠিক নয়| কোন ব্যক্তিকে শুধুমাত্র তার কৃত কোন অপরাধের জন্যই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে|” 7 অমত্সিয লবণ উপত্যকায 10,000 ইদোমীয় সেনাকে হত্যা করেন| তিনি যুদ্ধ করে সেলা দখল করে, সেলার নাম পালেট “য়ক্তেল” রাখেন| ঐ অঞ্চল এখনো পর্য়ন্ত এই নামেই পরিচিত| 8 অমত্সিয ইস্রায়েল-রাজ য়েহূর পৌত্র, যিহোয়াহসের পুত্র যিহোরামের কাছে দূত পাঠিয়ে তাঁকে সম্মুখ সমরে আহবান করলেন| 9 ইস্রায়েলের রাজা যিহোরাম তখন যিহূদার রাজা অমত্সিযকে খবর পাঠালেন, “লিবানোনের কাঁটাঝোপ লিবানোনের বটগাছকে বলেছিল, ‘আমার ছেলের বিয়ের জন্য তোমার মেয়েকে দাও|’ কিন্তু সে সময়ে একটা বুনো জন্তু যাবার পথে লিবানোনের কাঁটাঝোপকে মাড়িয়ে চলে যায়! 10 ইদোমকে যুদ্ধে হারাবার পর তোমার বড় গর্ব হয়েছে দেখছি! বেশি বাড় না বেড়ে চুপচাপ বাড়িতে বসে থাকো| নিজের বিপদ ডেকে এনো না কারণ, তাহলে তুমি একা নও, তোমার সঙ্গে সঙ্গে যিহূদারও সর্বনাশ হবে|” 11 কিন্তু অমত্সিয যিহোয়াশের সতর্কবাণীর কোন গুরুত্ব দিলেন না| অবশেষে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ যিহূদাররাজা অমত্সিযর সঙ্গে যুদ্ধ করতে বৈত্শেমশে গেলেন| 12 যুদ্ধে ইস্রায়েল যিহূদাকে হারিযে দিলে, যিহূদার সমস্ত লোক বাড়িতে পালিয়ে গেল| 13 বৈত্-শেমশে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ যিহূদার রাজা যোয়াশের পুত্র অমত্সিযকে বন্দী করলেন| তিনি অমত্সিযকে জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে জেরুশালেমের প্রাচীরের ইফ্রয়িমের দ্বার থেকে কোণের দরজা পর্য়ন্ত জেরুশালেমের 600 ফুট দেওয়াল ভেঙে 14 প্রভুর মন্দিরের যাবতীয় সোনা, রূপো, বাসন, দুর্মূল্য জিনিসপত্র লুঠ করে নিয়ে যান| এরপর আরো অনেককে বন্দী করে যিহোয়াশ শমরিয়ায ফিরে গেলেন| 15 যিহোয়াশ য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন এবং অমত্সিযের বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধের ব্বিরণ সব কিছুই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 16 যিহোয়াশের মৃত্যুর পর তাকে তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শমরিয়ায সমাধিস্থ করা হয়| এরপর তাঁর পুত্র যারবিয়াম নতুন রাজা হলেন| 17 যিহূদারাজ যোয়াশের পুত্র অমত্সিয, ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের পুত্র যিহোয়াশের মৃত্যুর পর আরো 15 বছর বেঁচে ছিলেন| 18 অমত্সিয য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সমস্তই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 19 জেরুশালেমের লোকরা অমত্সিযের বিরুদ্ধে চএান্ত করলে তিনি লাখীশে পালিয়ে যান| লোকরা তাঁকে লাখীশেই হত্যা করে| 20 লোকরা ঘোড়ার পিঠে অমত্সিযের মৃতদেহ নিয়ে এসে দায়ূদ নগরীতে তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করে| 21 যিহূদার সবাই মিলে তখন অসরিয়কে নতুন রাজা বানালেন| সে সময় অসরিয়ের বয়স ছিল মাত্র 16 বছর| 22 অর্থাত্ রাজা অমত্সিযের মৃত্যু হলে নতুন রাজা হলেন অসরিয়| তিনি এলত্ শহর পুনর্দখল করে তা নতুন করে বানান| 23 যোয়াশের পুত্র অমত্সিযের যিহূদায় রাজত্বকালের 15তম বছরে ইস্রায়েলরাজ যিহোয়াশের পুত্র যারবিয়াম শমরিয়ায নতুন রাজা হলেন| যারবিয়াম 41 বছর রাজত্ব করেছিলেন এবং 24 প্রভু যা কিছু বারণ করেছিলেন তিনি সেই সব করেন| তিনিও নবাটের পুত্র যারবিয়াম ইস্রায়েলের লোকদের য়ে সমস্ত পাপাচরণে বাধ্য করেছিলেন তা বন্ধ করেন নি| 25 ইস্রায়েলের প্রভু, গাত্-হেফরীয, অমিত্তযের পুত্র, তাঁর দাস, ভাব্বাদী য়োনাকে য়েমন বলেছিলেন সে ভাবেই তিনি লেবো-হমাত্ থেকে মৃত সাগর পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের ভূখণ্ড ফেরত্ নিয়েছিলেন| 26 প্রভু দেখলেন ইস্রায়েলীয়রা খুবই সমস্যায় পড়েছে| স্বাধীন বা পরাধীন এমন কেউই ছিল না য়ে ইস্রায়েলকে এই দুর্দশার হাত থেকে বাঁচাতে পারে| 27 কিন্তু প্রভু (তাও) একথা বলেন নি, য়ে তিনি পৃথিবী থেকে ইস্রায়েলের নাম মুছে দেবেন| তিনি যিহোয়াশের পুত্র যারবিয়ামকে ইস্রায়েলের লোকদের উদ্ধারের জন্য ব্যবহার করেছিলেন| 28 যারবিয়াম য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সব ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| এখানে যারবিয়াম কি ভাবে যিহূদার কাছ থেকে দম্মেশক ও হমাত্ শহর দুটি ইস্রায়েলের জন্য পুনর্দখল করেন সে কথাও লেখা আছে| 29 যারবিয়ামের মৃত্যু হলে তাঁকে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে, তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল| তার মৃত্যুর পর তার পুত্র সখরিয নতুন রাজা হলেন|
1 যারবিয়ামের রাজত্বের 27 তম বছরে অমত্সিযের পুত্র অসরিয় যিহূদার নতুন রাজা হয়েছিলেন| 2 অসরিয় যখন রাজা হন, তাঁর বয়স ছিল মাত্র 16 বছর| তিনি 52 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| অসরিয়ের মা ছিলেন য়িথলিযা থেকে| 3 অসরিয় তাঁর পিতা অমত্সিযের মত, প্রভুর চোখে য়েগুলো ঠিক সেই কাজগুলো করেছিলেন| 4 কিন্তু তিনি উঁচু বেদীগুলো ধ্বংস করেন নি| তখনও পর্য়ন্ত এই সব বেদীতে লোকেরা বলিদান করত ও ধূপধুনো দিত| 5 প্রভু রাজা অসরিয়কে কুষ্ঠরোগীতে পরিণত করেছিলেন এবং অসরিয় কুষ্ঠরোগী হিসেবেই শেষ পর্য়ন্ত মারা যান| তিনি একটা আলাদা ঘরে বাস করতেন এবং রাজপুত্র য়োথম রাজপ্রাসাদের দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও লোকদের বিচার করতেন| 6 অসরিয় য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সমস্তই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 7 অসরিয়র মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়| তাঁর মৃত্যুর পর নতুন রাজা হলেন তাঁর পুত্র য়োথম| 8 যারবিয়ামের পুত্র সখরিয, ইস্রায়েলের শমরিয়ায ছ’মাস রাজত্ব করেছিলেন| তিনি অসরিয়ের যিহূদায় রাজত্ব কালের 38তম বছরে শমরিয়ার শাসক হয়েছিলেন| 9 প্রভু যা কিছু বারণ করেছিলেন সখরিয সে সবই করেন| নবাটের পুত্র যারবিয়াম ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের য়ে সমস্ত পাপাচরণে বাধ্য করেছিলেন, তিনি তা বন্ধ করেন নি| 10 যাবেশের পুত্র শল্লুম চএান্ত করে সখরিযকে ইবলিযমে হত্যা করে নিজে নতুন রাজা হয়ে বসলেন| 11 সখরিয আর য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সব ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 12 প্রভু ‘য়েহূর উত্তরপুরুষরা চারপুরুষ ধরে ইস্রায়েলে শাসন করবে’ বলে য়ে ভবিষ্যত্বাণী করেছিলেন, তা এই ভাবে সত্যে পরিণত হল| 13 যিহূদায় উষিযের রাজত্বের 39তম বছরে যাবেশের পুত্র শল্লুম ইস্রায়েলের রাজা হন| তিনি এক মাস শমরিয়ায রাজত্ব করেছিলেন| 14 গাদির পুত্র মনহেম তির্সা থেকে শমরিয়ায এসে যাবেশের পুত্র শল্লুমকে হত্যা করে তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হয়ে বসলেন| 15 শল্লুম যা কিছু করেছিলেন, এমন কি সখরিযের বিরুদ্ধে তাঁর চএান্তের কথা এ সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 16 শল্লুমের মৃত্যুর পর মনহেম তিপ্সহ ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হন| সেখানকার নাগরিকরা শহরের দরজা খুলে দিতে অস্বীকার করায মনহেম তাদের পরাজিত করে জোর করে শহরে ঢুকে সেখানকার সমস্ত গর্ভবতী মহিলাদের কেটে ফেলেন| 17 যিহূদায় অসরিয়ের রাজত্বের 39 বছরের মাথায় ইস্রায়েলের রাজা হবার পর গাদির পুত্র মনহেম 10 বছরের জন্য শমরিয়ায রাজত্ব করেছিলেন| 18 প্রভু যা কিছু করতে বারণ করেছিলেন মনহেম সে সমস্ত কাজই করেছিলেন| নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতোই তিনি ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণ করতে বাধ্য করেছিলেন| 19 অশূর-রাজ পূল ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এলে মনহেম তাঁকে 75,000 পাউণ্ড রূপো দিয়ে নিজের পক্ষে আনার চেষ্টা করেন| 20 ধনী ও প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিদের কাছ থেকে কর আদায করে মনহেম এই টাকা তুলেছিলেন| তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রায় 20 আউন্স করে রূপো কর হিসেবে আদায করে, তারপর সেই অর্থ অশূর রাজের হাতে তুলে দিলে, অশূর রাজ ইস্রায়েল ছেড়ে চলে যান| 21 মনহেম যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 22 মনহেমের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়| এরপর মনহেমের পুত্র পকহিয় তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হন| 23 যিহূদায় অসরিয়ের রাজত্বের 50তম বছরে মনহেমের পুত্র পকহিয় শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হয়েছিলেন এবং তিনি দু বছর রাজত্ব করেছিলেন| 24 পকহিয় সে সমস্ত কাজই করেছিলেন, য়েগুলো ছিল প্রভুর দ্বারা নিষিদ্ধ| নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতই তিনিও ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের পথে ঠেলে দিয়েছিলেন| 25 পকহিয়র সেনাপতি ছিলেন রমলিযের পুত্র পেকহ| পেকহ অর্গব এবং অরিযি সমেত গিলিয়দের 50 জন ব্যক্তিকে তাঁর সঙ্গে নিয়েছিলেন এবং রাজপ্রাসাদের মধ্যে পকহিয়কে হত্যা করেছিলেন| 26 পকহিয় য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সেসব ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 27 রাজা অসরিয়ের যিহূদায় রাজত্বের 52তম বছরে রমলিয়ের পুত্র পেকহ শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হন| পেকহ 20 বছর রাজত্ব করেছিলেন| 28 এবং প্রভু যা কিছু বারণ করেছিলেন পেকহ সে সবই করেছিলেন| নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মত পেকহও ইস্রায়েলের লোকেদের পাপাচরণে বাধ্য করেন| 29 অশূররাজ তিগ্লত্পিলেষর এসে ইযোন, আবেল-বৈত্-মাখা, যানোহ, কেদশ, হাত্সোর, গিলিয়দ, গালীল ও নপ্তালির সমগ্র অঞ্চল দখল করে এখানকার লোকদের অশূরে বন্দী করে নিয়ে যান| এটা হয়েছিল যখন পেকহ ইস্রায়েলের রাজা ছিলেন| 30 উষিযের পুত্র য়োথমের যিহূদায় রাজত্বকালের 20 বছরের মাথায় এলার পুত্র হোশেয, রমলিযর পুত্র রাজা পেকহের বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে হত্যা করেন এবং নিজে নতুন রাজা হয়ে বসেন| 31 পেকহ যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 32 রমলিয়র পুত্র পেকহর ইস্রায়েলে রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে উষিযের পুত্র য়োথম যিহূদার নতুন রাজা হলেন| 33 য়োথম যখন রাজা হন তাঁর বয়স ছিল 25 বছর| তিনি 16 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা ছিলেন সাদোকের কন্যা য়িরূশা| 34 য়োথম তাঁর পিতা উষিয়ের মতোই প্রভু নির্দেশিত কাজকর্ম করেছিলেন| 35 কিন্তু তিনিও মূর্ত্তি পূজোর জন্য নির্মিত উঁচু বেদীগুলো ধ্বংস করেন নি| তখনও পর্য়ন্ত এইসব বেদীতে লোকেরা বলিদান করত ও ধুপধূনো দিত| য়োথম প্রভুর মন্দিরের ওপরের দরজাটি তৈরী করেছিলেন| 36 য়োথম য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 37 তাঁর রাজত্বকালে, অরামের রাজা রত্সীনকে এবং রমলিযর পুত্র পেকহকে প্রভু যিহূদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠিয়েছিলেন| 38 য়োথমের মৃত্যু হলে তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করার পর তাঁর পুত্র আহস নতুন রাজা হলেন|
1 রমলিযর পুত্র পেকহর ইস্রায়েলে রাজত্বের 17তম বছরে য়োথমের পুত্র আহস যিহূদার রাজা হলেন| 2 আহস যখন রাজা হন সে সময়ে তাঁর বয়স ছিল 20 বছর| তিনি 16 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| আহস তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মত ছিলেন না, তিনি তাঁর রাজত্ব কালে প্রভুর অভিপ্রেত কাজকর্ম করেন নি| 3 আহস ইস্রায়েলের রাজাদের মতো জীবনযাপন করতেন| এমন কি তিনি তাঁর নিজের পুত্রকেও আগুনে বলিদান দিয়েছিলেন|ইস্রায়েলীয়দের আবির্ভাবের আগে, প্রভু বীভত্স পাপাচরণের জন্য য়ে সমস্ত দেশ পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন, আহস সেই সমস্ত পাপ কার্য় অনুসরণ করেছিলেন| 4 বলিদান করা ছাড়াও, আহস উচ্চস্থানে, পাহাড়ে ও প্রতিটি সবুজ গাছের নীচে ধুপধূনো দিতেন| 5 অরামের রাজা রত্সীন ও রমলিযের পুত্র ইস্রায়েলের রাজা পেকহ জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসে আহসকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেললেও শেষপর্য়ন্ত পরাজিত করতে পারেন নি| 6 কিন্তু, সেই সময়ে, অরামরাজ রত্সীন যিহূদার লোকদের যারা সেখানে বাস করত তাদের তাড়িয়ে এলত্ দখল করেন| এরপর অরামীয়রা এলতে বসবাস শুরু করে এবং তারা এখনো সেখানেই আছে| 7 আহস অশূররাজ তিগ্লত্-পিলেষরের কাছে দূত পাঠিয়ে জানালেন, “আমি আপনার দাসানুদাস| আমাকে আপনার সন্তান জ্ঞান করে অরামের রাজা এবং ইস্রায়েলের রাজার হাত থেকে রক্ষা করুন! এরা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছে!” 8 প্রভুর মন্দিরের এবং রাজকোষের সমস্ত সোনা রূপো নিয়ে আহস উপহারস্বরূপ সেসব অশূররাজকে পাঠিয়ে দেন| 9 আহসের মিনতিতে সাড়া দিয়ে অশূররাজ দম্মেশকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দম্মেশক দখল করেন এবং রত্সীনকে হত্যা করে সেখানকার লোকদের বন্দী করে কীরে নিয়ে যান| 10 দম্মেশকে অশূররাজ তিগ্লত্-পিলষরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে গিয়ে আহস সেখানকার বেদীটি দেখে তার একটা নকশা যাজক ঊরিযর কাছে পাঠান| 11 যাজক ঊরিয তখন আহস ফিরে আসার আগেই দম্মেশকের বেদীটির মতো অবিকল দেখতে আরেকটা বেদী বানিয়ে রাখলেন| 12 দম্মেশক থেকে ফিরে এসে আহস সেই বেদীতে শস্য নৈবেদ্য ও হোমবলি দিলেন| 13 এছাড়াও তিনি ওই বেদীতে হোমবলি ও শস্য নৈবেদ্য পোড়ালেন| তিনি বেদীর ওপর পেয নৈবেদ্য ঢাললেন এবং মঙ্গল নৈবেদ্য়ের রক্ত ছিটিয়ে দিলেন| 14 মন্দিরের সামনে প্রভুর সম্মুখভাগ থেকে আগের পিতলের বেদীটি আহস তুলে ফেলেন কারণ এটি তাঁর বানানো বেদী ও প্রভুর মন্দিরের মাঝখানে ছিল| আগের বেদীটাকে আহস তাঁর নিজের বানানো বেদীর উত্তর দিকে বসিযে দেন| 15 আহস যাজক ঊরিযকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, “সকালের হোমবলি, বিকেলের শস্য নৈবেদ্য ও দেশের লোকেদের পেয নৈবেদ্য য়েন বড় বেদীর ওপর দেওয়া হয়| বলিদানের পর ও হোমবলির নৈবেদ্য থেকেও সমস্ত রক্ত য়েন বড় বেদীটায ঢালা হয়| পিতলের বেদীটা আমি ঈশ্বরকে প্রশ্ন করার সময় ব্যবহার করব|” 16 যাজক ঊরিয রাজা আহসের নির্দেশ মতোই সমস্ত কাজ করেছিলেন| 17 মন্দিরে যাজকদের হাত ধোবার জন্য পাটাতনের ওপর পিতলে খোপ ও গামলা বসানো ছিল| আহস সেই সমস্ত খোপ ও গামলা সরিয়ে পাটাতনটি কেটে ফেলেন| তিনি ওটার তলায় রাখা পিতলের ষাঁড়ের সঙ্গে লাগানো বড় জল রাখার পাত্রটাও খুলে সান বাঁধানো মেঝেতে নামিযে দিয়েছিলেন| 18 কর্মীরা বিশ্রামের দিনের জমায়েতের জন্য মন্দিরের ভেতরে একটা ঢাকা জায়গা তৈরী করছিল| কিন্তু আহস সেই জায়গাটা সরিয়ে দেন| এছাড়াও আহস প্রভুর মন্দিরের বাইরের রাজাদের প্রবেশদ্বারটি খুলে নিয়েছিলেন| এসবই তিনি অশূররাজের জন্য করেছিলেন| 19 আহস য়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সব ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 20 আহসের মৃত্যুর পর, তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করা হয়| তারপর তাঁর পুত্র হিষ্কিয় নতুন রাজা হলেন|
1 রাজা আহসের যিহূদায় রাজত্বকালের 12তম বছরে এলার পুত্র হোশেয শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজা হলেন এবং 9 বছর রাজত্ব করেন| 2 যদিও হোশেয সে সব কাজ করেছিলেন, প্রভুর দ্বারা য়ে সব কাজ ভুল বলে গণ্য হত, তবু তিনি তাঁর পূর্ববর্তী ইস্রায়েলের রাজাদের মত খারাপ ছিলেন না| 3 অশূররাজ শল্মনেষর হোশেযর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, যিনি একদা তাঁর ভৃত্য ছিলেন এবং যিনি তাঁকে বশ্যতার কর দিতেন| 4 কিন্তু পরে তিনি মিশররাজ সোর কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠিয়ে অশূররাজকে কর পাঠানো বন্ধ করে দিলেন| অশূররাজ, হোশেযর এই চএান্তের কথা জানতে পেরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলে আটক করেন| 5 ইস্রায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমণ করতে করতে অশূররাজ শেষ পর্য়ন্ত শমরিয়ায এসে পৌঁছান এবং শমরিয়ার বিরুদ্ধে তিনি টানা তিন বছর যুদ্ধ করেন| 6 হোশেযর ইস্রায়েল শাসনের নবম বছরে শমরিয়া দখল করেন| অশূররাজ বহু ইস্রায়েলীয়কে বন্দী করে তাদের অশূর দেশে নিয়ে গিয়েছিলেন| এই সমস্ত বন্দীদের তিনি হলহ, হাবোর ও গোষণ নদীর তীরে ও মাদীযদের বিভিন্ন শহরে বসবাসে বাধ্য করেছিলেন| 7 ইস্রায়েলীয়রা তাদের প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপাচরণ করেছিল বলেই এ ঘটনা ঘটেছিল| অথচ প্রভুই তাদের মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন, মিশরের ফরৌণের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন! কিন্তু তারপরেও, ইস্রায়েলীয়রা বিভিন্ন মূর্ত্তির পূজা শুরু করেছিল| 8 ঈশ্বরকে মেনে চলার পরিবর্তে, লোকরা সেই সব লোকদের বিধি, যাদের প্রভু দেশ থেকে উত্খাত করেছিলেন এবং ইস্রায়েলীয় রাজাদের প্রবর্তিত বিধিসমূহ মানতে শুরু করল| 9 ইস্রায়েলীয়রা প্রভু, তাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গোপনে গোপনে পাপাচরণ করতে শুরু করল যাকে কোন মতেই সঠিক কাজ বলা যায় না|ইস্রায়েলীয়রা ছোট ছোট শহর থেকে শুরু করে বড় বড় শহরে প্রত্যেক জায়গায় উচ্চস্থান তৈরী করল| 10 পাহাড়ে ও গাছের তলায় স্মরণস্তম্ভ ও দেবী আশেরার জন্য খুঁটি বসিযেছিল| 11 এই সব জায়গায় তারা প্রভু কর্ত্তক বিতাড়িত অন্যান্য জাতির মত ধুপধূনো দিতে শুরু করেছিল, যার ফলে প্রভু রুদ্ধ হয়েছিলেন| 12 তারা মূর্ত্তি পূজাও শুরু করেছিল| প্রভু বহুবার ইস্রায়েলীয়দের সতর্ক করে বলেছিলেন, “তোমরা এই সব পাপাচরণ কর না|” 13 প্রভু প্রত্যেকটি ভাব্বাদী ও দ্রষ্টার মাধ্যমে ইস্রায়েল ও যিহূদাকে পাপাচরণ থেকে দূরে থাকতে সতর্ক করে দিয়েছিলেন| তিনি বলেছেন, “আমি আমার দাসদের হাত দিয়ে তোমাদের পূর্বপুরুষদের য়ে নিয়ম ও আদেশ দিয়েছি তোমরা তা অনুসরণ করে চলো|” 14 কিন্তু তবুও লোকরা কর্ণপাত করেনি| তারা তাদের পূর্বপুরুষদের মতই গোঁযার্তুমি করে প্রভু, তাদের ঈশ্বরের অবজ্ঞা করেছে, তাঁর প্রতি আস্থা রাখেনি| 15 লোকরা তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে প্রভুর য়ে চুক্তি হয়েছিল সেটা বা তাঁর নির্দেশিত আদেশগুলি অনুসরণ করে নি| প্রভুর সাবধানবাণী না মেনে এবং অয়োগ্য মূর্ত্তি পূজা করে এবং প্রতিবেশী দেশসমূহের মত জীবনযাপন করে তারা নিজেদের অপদার্থ প্রতিপন্ন করেছিল| অথচ প্রভু তাদের বারবার সতর্ক করে দিয়েছিলেন| 16 প্রভু, তাদের ঈশ্বরের আদেশ অস্বীকার করে লোকরা সোনার বাছুর তৈরী করেছে| আশেরার খুঁটি পুঁতেছে; আকাশের চাঁদ, তারা, বাল মূর্ত্তিকে পূজা দিয়েছে; 17 এমন কি তাদের ছেলেমেয়েদের হোমবলি দিয়েছে| ভবিষ্যত্ জানার জন্য তারা মন্ত্র-তন্ত্র, ডাকিনী বিদ্যা আযত্ত করতে চেষ্টা করেছে| এমন কি পাপাচরণের জন্য দেহ বিক্রিয পর্য়ন্ত করেছে| এসব কাজের জন্য প্রভু তাদের ওপর রুদ্ধ হয়ে 18 তাদের নিজের চোখের সামনে থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন| যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী ছাড়া আর কোন ইস্রায়েলীয় পরিবারই প্রভুর কোপ দৃষ্টি থেকে রক্ষা পাযনি| 19 যিহূদার লোকরাও নির্দোষ ছিল না, তারাও প্রভু, তাদের ঈশ্বরের আদেশগুলো মানেনি এবং ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের মতই পাপাচরণে লিপ্ত হয়েছিল| 20 প্রভু ইস্রায়েলের সমগ্র লোকদের বাতিল করে দিলেন ও তাদের কাছে নানা সঙ্কট ও বিপদ এনে দিয়েছিলেন| অন্যান্য জাতিদের হাতে তাদের ধ্বংস করে শেষাবধি নিজের চোখের সামনে থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন| 21 প্রভু ইস্রায়েলীয়দের দায়ূদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করেন এবং ইস্রায়েলীয়রা নবাটের পুত্র যারবিয়ামকে তাদের রাজা করেন| আর যারবিয়াম ইস্রায়েলীয়দের প্রভু নির্দেশিত পথ থেকে দূরে সরিয়ে এনে ভযঙ্কর সমস্ত পাপের পথে নিয়ে যান ও তাদের পাপাচরণে বাধ্য করেন| 22 23 প্রভু তাদের চোখের সামনে থেকে দূর না করে দেওয়া পর্য়ন্ত তারা এই সব পাপাচরণ করা বন্ধ করেনি| তাই প্রভু এই সমস্ত বিপর্য়যের কথা জানিয়ে আগেই তাঁর ভাব্বাদীদের মুখ দিয়ে ভবিষ্যত্বাণী করিযেছিলেন| ফলস্বরূপ ইস্রায়েলীয়রা গৃহচ্যুত হয়ে অশূর রাজ্যে য়েতে বাধ্য হল এবং এখনও পর্য়ন্ত তারা সেখানেই বাস করে| 24 ইস্রায়েলীয়দের হাত থেকে শমরিয়া অধিকার করে নিয়ে অশূরের রাজা বাবিল, কূথা, অব্বা, হমাত্ ও সফর্বযিম থেকে নতুন বাসিন্দা নিয়ে এসে তাদের শমরিয়া ও তার আশেপাশের শহরগুলোয বসিযে দিলেন| 25 এই সমস্ত লোক শমরিয়ায এসে প্রভুকে অবজ্ঞা করলে প্রভু তাদের আক্রমণ করার জন্য সিংহ পাঠিয়ে দিলেন| ফলস্বরূপ সিংহের আক্রমণে এদের কিছু লোক মারা পড়ল| 26 কিছু লোক তখন অশূররাজকে বলল, “আপনি য়ে সমস্ত লোকদের শমরিয়ার শহরগুলোতে বসিযে দিয়েছিলেন তারা ওখানকার দেবতার নীতি-নির্দেশগুলো জানত না| সে কারণেই সেখানকার দেবতা এই সমস্ত অজ্ঞ লোকদের হত্যা করার জন্য সিংহ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন|” 27 তখন অশূররাজ নির্দেশ দিলেন, “শমরিয়া থেকে য়ে সমস্ত যাজকদের ধরে আনা হয়েছিল, তাদের এক জনকে আবার শমরিয়াতে পাঠিয়ে দাও যাতে সে ওখানকার লোকদের ঐ দেশের মূর্ত্তির নীতি-নির্দেশগুলো শিখিযে পড়িযে তুলতে পারে|” 28 তখন য়ে সমস্ত যাজকদের অশূররা শমরিয়া থেকে ধরে এনেছিল তাদের একজনকে বৈথেলে থাকতে পাঠানো হল, যাতে তিনি শমরিয়ার নতুন লোকদের প্রভুকে সম্মান জানানোর পথগুলি শেখাতে পারেন| 29 কিন্তু তা সত্ত্বেও, শমরিয়ার লোকরা বিভিন্ন শহরে অনেক উচ্চস্থান তৈরী করেছিল| সেখানে বিভিন্ন প্রকারের জাতি বাস করত এবং প্রত্যেক জাতির নিজস্ব দেবতা ছিল| এই সব লোকরা তাদের নিজস্ব দেবতাকে যেখানে তারা বাস করত সেই সব উচ্চস্থানে রেখেছিল| 30 বাবিলের লোকরা এই ভাবে তাদের মূর্ত্তি সুক্কোত্-বনোত্কে স্থাপন করল; কূথের লোকরা নের্গলের মূর্ত্তি বানালো; হমাতের লোকরা অশীমার মূর্ত্তি বানালো; 31 অব্বীযেরা স্থাপন করলো নিভস ও তর্ত্তকের মূর্ত্তি আর সফর্বীযেরা তাদের দেবতা অদ্রম্মেলক ও অনম্মেলকের উদ্দেশ্যে নিজেদের ছেলেমেয়েদের আগুনে বলি দিতে লাগল| 32 এসবের পাশাপাশি এই সমস্ত লোক প্রভুরও উপাসনা করতো! সাধারণ লোকদের মধ্যে থেকে তারা বেদীতে পূজা করার জন্য যাজকদের বেছে নিয়েছিল, যারা লোকদের হয়ে মন্দিরে ও বেদীতে উপাসনা করতো ও বলি দিত| 33 তারা নিজেদের দেশের রীতিনীতি অনুযায়ীনিজেদের দেবদেবীর সঙ্গে প্রভুরও উপাসনা করতো| 34 এমনকি এখনও অতীতের মতোই এই সমস্ত লোক প্রভুর প্রতি য়থোচিত শ্রদ্ধা ও সম্মান না দেখিয়ে বাস করে| তারা মোটেই ইস্রায়েলীয়দের নিয়ম এবং আদেশগুলি পালন করে নি| যাকোবের সন্তানদের প্রভু য়ে বিধি ও আজ্ঞা দিয়েছিলেন তা তারা পালন করে নি| 35 প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন, “তোমরা অন্য মূর্ত্তিসমূহ পূজা করবে না, তাদের সম্মান দেখাবে না বা তাদের জন্য বলিদান করবে না| 36 তোমরা শুধুমাত্র প্রভুকে, য়ে প্রভু ঈশ্বর তোমাদের মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন, তাঁকেই অনুসরণ করবে| প্রভু তোমাদের উদ্ধার করার জন্য তাঁর ক্ষমতা প্রদর্শন করেছিলেন, তোমরা এক মাত্র তাঁরই উপাসনা করবে এবং তাঁর উদ্দেশ্যে বলিদান করবে| 37 তোমরা অবশ্যই তাঁর নিয়ম, বিধি, শিক্ষা অনুসারে চলবে এবং সব সময় তিনি য়ে ভাবে বলেছেন সেই ভাবে জীবনযাপন করবে| অন্য দেবতাদের সম্মান কর না| 38 তোমরা কখনো আমার সঙ্গে তোমাদের চুক্তির কথা ভুলে য়েও না| অন্য কোন দেবদেবীর আনুগত্য স্বীকার কোর না| 39 তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রতি সম্মান দেখাও, তাহলে তিনি তোমাদের সমস্ত শএুর হাত থেকে, সমস্ত বিপদে-আপদে রক্ষা করবেন|” 40 কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা সে কথা শুনল না| তারা আগের মতোই পাপাচরণ করে য়েতে লাগলো| 41 তাই এখন, অন্যান্য জাতির লোকরা প্রভুর প্রশংসা করে, কিন্তু তারা তাদের নিজেদের মূর্ত্তিও পূজা করে| আর পিতামহ-প্রপিতামহদের অনুসরণ করে তাদের ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি, পূর্বপুরুষরা এখনও পর্য়ন্ত সে ভাবেই পূজা করে আসছে|
1 এলার পুত্র হোশেযের ইস্রায়েলে রাজত্বের তৃতীয় বছরে আহসের পুত্র হিষ্কিয় যিহূদার রাজা হন| 2 পঁচিশ বছর বযসে রাজা হয়ে হিষ্কিয় মোট 29 বছর জেরুশালেম শাসন করেছিলেন| তাঁর মা অবী ছিলেন সখরিযের কন্যা| 3 তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতোই হিষ্কিয় প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবন কাটিযেছিলেন| 4 হিষ্কিয় উচ্চস্থানগুলি এবং স্মরণ স্তম্ভগুলো ভেঙে ফেললেন এবং আশেরার খুঁটিগুলিও কেটে ফেলেছিলেন| সে সময় ইস্রায়েলের লোকরা “নহুষ্টন” নামে মোশির বানানো পিতলের একটা সাপের মূর্ত্তির সামনে ধুপধূনো দিত| হিষ্কিয় লোকদের এই পুতুল পূজা বন্ধ করার জন্য পিতলের সাপটাকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে দিয়েছিলেন| 5 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের ওপর হিষ্কিয়র সম্পূর্ণ আস্থা ছিল| হিষ্কিয়র আগে বা পরে যিহূদার কোন রাজাই তাঁর মত ছিলেন না| 6 হিষ্কিয় প্রভুর সম্পূর্ণরূপে অনুগত ছিলেন এবং তিনি সব সময়ই প্রভুকে অনুসরণ করে চলেছিলেন| তিনি মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশগুলো মেনে চলেছিলেন| 7 তাই প্রভুও সর্বক্ষেত্রে হিষ্কিয়র সহায় হয়েছিলেন| হিষ্কিয় যা কিছু করছিলেন, তাতেই সফল হন|হিষ্কিয় অশূররাজের আধিপত্য অস্বীকার করে তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন বন্ধ করেন| 8 তিনি ঘসা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ছোট বড় সমস্ত পলেষ্টীয় শহরগুলোকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন| 9 অশূররাজ শলমনেষর, হিষ্কিয়র যিহূদায় রাজত্বের চতুর্থ বছরে এবং এলার পুত্র হোশিযর ইস্রায়েলে রাজত্বের সপ্তম বছরে, শমরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন| অশূররাজের সেনাবাহিনী চতুর্দিক থেকে শমরিয়া ঘিরে ফেলে 10 এবং তৃতীয় বছরে অশূররাজ শলমনেষর শমরিয়া দখল করেন| হিষ্কিয়র যিহূদায় শাসনের ষষ্ঠ বছরে এবং হোশিযর ইস্রায়েলে শাসনের নবম বছরে শমরিয়া অশূররাজের পদানত হয়| 11 অশূররাজ ইস্রায়েলীয়দের বন্দী করে তাঁর সঙ্গে অশূর রাজ্যে নিয়ে গিয়েছিলেন| তিনি তাদের হলহ, হাবোর, গোষণ নদীর তীরে মাদীযদের বিভিন্ন শহরে বসবাস করতে বাধ্য করেন| 12 ইস্রায়েলীয়রা তাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করায এবং প্রভুর সঙ্গে তাদের চুক্তি ভঙ্গ করার জন্যই এ ঘটনা ঘটেছিল| প্রভুর দাস মোশি য়ে আদেশগুলি দিয়েছিলেন বা ইস্রায়েলীয়দের য়ে নীতি-শিক্ষা দিয়েছিলেন, তা তারা পালন না করার জন্যই এই দুর্য়োগ ঘনিয়ে আসে| 13 হিষ্কিয়র রাজত্বের 14তম বছরে, অশূর-রাজ সন্হেরীব যিহূদার দূর্গ বেষ্টিত সমস্ত শহরগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন এবং তাদের পরাজিত করেন| 14 তখন যিহূদার রাজা হিষ্কিয় লাখীশে অশূররাজের কাছে একটা খবর পাঠালেন| হিষ্কিয় বললেন, “আমি অন্যায করেছি| আপনি আমার রাজত্ব ছেড়ে চলে গেলে, আপনি যা চাইবেন আমি তাই দিতে প্রস্তুত আছি|”তখন অশূররাজ হিষ্কিয়ের কাছে 11 টন রূপো ও 1 টন সোনা চেয়ে পাঠালেন! 15 হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরে ও রাজকোষে যত রূপো ছিল সবই অশূররাজকে দিয়ে দেন| 16 হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরের দরজা ও দরজার থামে য়েসব সোনা বসিযেছিলেন, সে সবও কেটে অশূররাজকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন| 17 অশূররাজ লাখীশ থেকে জেরুশালেমে হিষ্কিয়র কাছে তাঁর সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনজন সেনাপতি, রব্শাকি, তর্ত্তয ও রব্সারিসের অধীনে একটি বড় সেনাবাহিনী পাঠান| তারা ধোপাদের ঘাটের কাছের রাস্তার ওপরের খাঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ছিল| 18 তিনি হিল্কিয়ের পুত্র রাজপ্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক ইলিয়াকীম, সচিব শিব্ন ও এক জন তথ্য়সংগ্রাহক আসফের পুত্র য়োয়াহ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বাইরে এল| 19 তিনজন সেনাপতিদের একজন, রব্শাকি বললেন, “হিষ্কিয়কে গিয়ে জানাও য়ে অশূররাজ বলেছেন:তোমার আত্মবিশ্বাসের পেছনে কি কারণ আছে? 20 তুমি বলো, “যুদ্ধ করবার মতো য়থেষ্ট শক্তি তোমার আছে|” কিন্তু সে তো কথার কথা মাত্র! কার ভরসায় তুমি আমার অধীনতা অস্বীকার করেছ? 21 তুমি কি মিশরের ওপর, একটি বেনু বাঁশের তৈরী চলবার ছড়ির ওপর নির্ভর করছ? মনে রেখো এই ছড়ির ওপর বেশী ভর দিলে, ছড়ি তো ভাঙবেই এমন কি তার চোঁচও তোমার হাতে ফুটে তোমায় জখম করতে পারে! মিশরের রাজার উপরে তুমি নির্ভর করতে পার না| 22 একথা শুনে তুমি হয়তো বলবে, “আমাদের প্রভু, ঈশ্বরের ওপরে আস্থা আছে|” কিন্তু আমি এও জানি, তোমার লোকরা প্রভুকে য়ে উঁচু বেদীগুলোয উপাসনা করত, তুমি সেই সমস্ত ভেঙে দিয়ে যিহূদার লোকদের বলেছ, “তোমরা শুধুমাত্র জেরুশালেমের বেদীর সামনে উপাসনা করবে|” 23 এখন অশূররাজের সঙ্গে এই চুক্তিটি করে ফেলো এবং আমি তোমাকে 2,000 ভাল ঘোড়া দেব যদি তুমি ততগুলো অশ্বারোহী জোগাতে পার| 24 কারণ তোমরা মিশরের রথ আর অশ্বারোহীদের ওপর ভরসা করে আমাদের সেনাবাহিনীর একজন জমাদারকেও হারাতে পারবে না! 25 আমরা প্রভুর বিনা সম্মতিতে জেরুশালেম ধ্বংস করতে আসি নি| প্রভুই বয়ং বলেছেন, “যাও, এই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এই দেশকে ধ্বংস করো!” 26 একথা শুনে, হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকিম, শিব্ন ও য়োয়াহ সেই সেনাপতিকে বলল, “অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আরামিক ভাষায় কথা বলুন| কারণ যদি আপনি ইহুদীদের ভাষায় কথা বলেন, তাহলে দেওয়ালের ওপরের লোকরা আমাদের কথাবার্তা শুনতে পাবে!” 27 কিন্তু এই সেনাপতি রব্শাকি তখন বললেন, “আমাদের রাজা আমায় কেবলমাত্র তোমার বা তোমার রাজার সঙ্গে কথা বলতে পাঠান নি| আমি দেওয়ালের ওপরে বসে থাকা লোকদের সঙ্গেও কথা বলছি| কারণ তাদেরও তোমাদের মতো নিজেদের বিষ্ঠা খেতে হবে, আর নিজেদের মূত্র পান করতে হবে!” 28 তারপর এই সেনাপতি উঁচু গলায ইহুদীদের ভাষায় বললেন, “মহামান্য অশূররাজের বলে পাঠানো এই কথাগুলো মন দিয়ে শোন! 29 অশূররাজ বলেছেন, ‘হিষ্কিয়র চালাকিতে আকৃষ্ট হযো ন! ও কোন ভাবেই আমার হাত থেকে তোমাদের বাঁচাতে পারবে না!’ 30 হিষ্কিয়র কথা মেনো না এবং প্রভুর ওপরেও ভরসা করো না| হিষ্কিয় বলে, ‘প্রভু আমাদের রক্ষা করবেন! অশূররাজ এই শহর দখল করতে পারবে না!’ 31 কিন্তু হিষ্কিয়র কথা শুনো না!“অশূররাজ বলে পাঠিয়েছেন: ‘আমার সঙ্গে সন্ধি স্থাপন করো| আমার আনুগত্য স্বীকার করলে তোমরা তোমাদের নিজেদের ক্ষেতের ফসল, বাড়ির কুঁযোর জল খেতে পারবে| 32 তোমরা যদি আমি আসার পর আমার সঙ্গে সঙ্গে চলে আসো তাহলে তোমাদের এমন এক দেশে নিয়ে যাব, যেখানে সবুজ ক্ষেত শস্য়ে ভরে থাকে, অপর্য়াপ্ত দ্রাক্ষারস আর গাছ-গাছালি ফলে ভরে থাকে| তোমরা স্বাচ্ছন্দ্য়ে, খাবার ও বস্ত্রসহ থাকতে পারবে| কিন্তু হিষ্কিয়র কথায় তোমরা কান দিও না| ও তোমাদের দলে টানতে চেষ্টা করছে, বলছে, ‘প্রভু আমাদের রক্ষা করবেন|’ 33 কিন্তু ভেবে দেখো কোন দেশের দেবতাই কি তাঁর উপাসকদের অশূররাজের কবল থেকে বাঁচাতে পেরেছেন? না! 34 কোথায গেল হমাত আর অর্পদের দেবতারা? কিংবা সফর্বযিম, হেনা আর ইব্বার দলবল? তাঁরা কি আমার হাত থেকে শমরিয়াকে বাঁচাতে পারলেন? না! 35 অন্য কোন দেবতা কি আমার হাত থেকে তাঁদের দেশ রক্ষা করতে পেরেছেন? না! প্রভু কেমন করে আমার হাত থেকে জেরুশালেম রক্ষা করবেন?” 36 কিন্তু একথা শুনেও লোকরা নিশ্চুপ হয়ে থাকল| তাঁরা একটা কথাও উচ্চারণ করল না কারণ মহারাজ হিষ্কিয় তাদের বলে দিয়েছিলেন, “ওর সঙ্গে তোমরা কোন কথা বলো না|” 37 রাজপ্রাসাদের চৌকিদার, হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকীম, শেব্ন ও আসফের পুত্র, তথ্য়সংগ্রাহক য়োয়াহ হিষ্কিয়র কাছে এল| শোকপ্রকাশের জন্য তারা ছেঁড়া জামাকাপড় পরেছিল| অশূররাজের সেনাপতি তাদের কি বলেছেন, তারা সেই সব রাজা হিষ্কিয়কে জানাল|
1 সমস্ত কথা শুনে রাজা হিষ্কিয়ও শোকার্ত হয়ে ভাল পোশাক ছিঁড়ে চটের পোশাক পরে প্রভুর মন্দিরে গেলেন| 2 হিষ্কিয় রাজপ্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক ইলীয়াকীম, সচিব শিব্ন ও প্রধান যাজকদের আমোসের পুত্র ভাব্বাদী যিশাইয়র কাছে পাঠালেন| তারাও সকলে শোক প্রকাশের জন্য চটের পোশাক পরেছিল| 3 এরা সকলে গিয়ে যিশাইয়কে বলল, “হিষ্কিয় বলেছেন, ‘এই সঙ্কটের দিনে আমাদের করা ভুল-ভ্রান্তি ও পাপাচরণের কথা স্মরণ করা উচিত্| কিন্তু অবস্থা এখন এরকম য়ে নবজাতকের জন্ম দিতে হবে অথচ প্রসূতির কোন শক্তি নেই| 4 অশূররাজের সেনাপতি এসে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে পর্য়ন্ত প্রশ্ন তুলেছে, অনেক খারাপ কথা শুনিয়ে গিয়েছে| সম্ভবতঃ আপনার প্রভু ঈশ্বর সে সবই শুনতে পেয়েছেন, হয়তো এর জন্য প্রভু তাঁর শএুদের যথোচিত শাস্তিও দেবেন| অনুগ্রহ করে আপনি, য়ে সমস্ত লোক এখনও জীবিত আছে তাদের জন্য প্রার্থনা করুন|”‘ 5 মহারাজ হিষ্কিয়র উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীরা যিশাইয়র কাছে গেলে 6 তিনি তাদের বললেন, “তোমাদের গুরুকে গিয়ে খবর দাও: ‘প্রভু বলেছেন: অশূররাজের কর্মচারীরা আমাকে অপমান করার জন্য য়ে সব কথা বলে গিয়েছে, তা শুনে ভয পাবার কোন কারণ নেই! 7 আমি ওর ওপর ভর করার জন্য এক অপদেবতাকে পাঠাচ্ছি| তারপর দেখো, গুজবে ভয পেয়ে ও নিজেই নিজের দেশে ছুটে পালাবে| সেখানে আমি তরবারির আঘাতে ওর মৃত্যুর জন্য সমস্ত আয়োজন করে রাখছি|”‘ 8 অশূর-রাজের সেনাপতি খবর পেলেন, তাদের মহারাজ লাখীশ ছেড়ে গিয়ে লিব্নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন| 9 ইতিমধ্যে অশূর-রাজ গুজব শুনলেন, “কূশদেশের রাজা তির্হকঃ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছেন!”তখন অশূর-রাজ হিষ্কিয়র কাছে আবার দূত মারফত্ খবর পাঠালেন| এই বার্তায বলা হল: 10 যিহূদা-রাজা হিষ্কিয় সমীপেষু, আপনাদের ঈশ্বরের দ্বারা প্রতারিত হয়ে যদি আস্থা রাখেন, “অশূর-রাজ জেরুশালেমকে পদানত করতে পারবেন না!” তাহলে ভুল করবেন| 11 আপনি নিশ্চয়ই অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে অশূর-রাজের যুদ্ধযাত্রা ও তাদের পরিণতির কথা অবগত আছেন| এই সমস্ত দেশকে আমরা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছি| আপনারা কি ভাবছেন য়ে, আপনারা উদ্ধার পাবেন? 12 এই সমস্ত জাতির দেবতা তাঁদের নিজেদের লোকদের বাঁচাতে পারেন নি| আমার পূর্বপুরুষরা, গোষণ, হারণ, রেত্সফ, তলঃশর এদোনের লোকরা এদের সবাইকেই ধ্বংস করেছিলেন| 13 কোথায গেলেন হমাত্, অর্পদ, সফর্বযিম, হেনা, ইব্বার রাজারা? এঁরা সকলেই মরে ভূত হয়ে গিয়েছেন!” 14 দূতদের কাছ থেকে এই চিঠি নিয়ে পড়ার পর হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরে গিয়ে প্রভুর সামনে চিঠিখানা মেলে ধরলেন| 15 তারপর তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু করূব দূতদের মধ্যে আসীন ইস্রায়েলের ঈশ্বর আপনি এই পৃথিবীর সমস্ত ভূ-ভাগ, সমস্ত দেশেরই নিযামক| স্বর্গ ও পৃথিবী আপনারই হাতে গড়া| 16 প্রভু, অনুগ্রহ করে আমার কথা শুনুন, চোখ খুলে এই চিঠিখানা দেখুন| কি ভাবে সন্হেরীব জীবন্ত ঈশ্বরকে অপমান করেছেন তা শুনুন| 17 প্রভু ইহা সত্য অশূর-রাজ এসমস্ত দেশ ধ্বংস করেছেন| 18 তারা তাদের মূর্ত্তিসমূহকে আগুনে ছুঁড়ে ফেলেছেন এসবই সত্যি কথা| কিন্তু সেই সব মূর্ত্তি তো আসলে মানুষের বানানো কাঠ এবং পাথরের পুতুল মাত্র ছিল| য়ে কারণে অশূর-রাজ ওদের ধ্বংস করতে পেরেছিলেন| 19 কিন্তু এখন প্রভু, আমাদের ঈশ্বর অশূর-রাজের কবল থেকে উদ্ধার করুন| তাহলে পৃথিবীর সর্বত্র সবাই জানবে প্রভুই একমাত্র ঈশ্বর|” 20 আমোসের পুত্র যিশাইয়, হিষ্কিয়কে খবর পাঠালেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর জানিয়েছেন: ‘তুমি সন্হেরীবের বিরুদ্ধে আমার কাছে য়ে প্রার্থনা করেছো, আমি তা শুনতে পেয়েছি|’ 21 “সন্হেরীব সম্পর্কে প্রভু বলেন:সিযোনের কুমারী কন্যা মনে করে তুমি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নও| তাই সে তোমায় টিটকিরি করে, তোমার পেছনে তোমায় অপমান করছে| 22 তুমি কাকে অপমান করেছ এবং ঈশ্বরের নামে কাকে অভিশাপ দিয়েছ বলে মনে কর? তুমি কার বিরুদ্ধে গলা তুলেছ এবং গর্বিত ভাবে তাকিযেছ? সেটা ইস্রায়েলের সেই পবিত্র এক জনের বিরুদ্ধে| 23 তাই তুমি তোমার বার্তাবাহকদের এই কথা বলবার জন্য পাঠিয়ে প্রভুকে অপমান করেছ| তুমি বলেছ, “আমার অজস্র রথবাহিনী নিয়ে আমি উচ্চতম পর্বত থেকে লিবানোনের গভীরতম প্রদেশ পর্য়ন্ত গিয়েছি| সেখানকার উচ্চতম দেবদারু গাছ থেকে শুরু করে সব চেয়ে ভাল আর দুর্মূল্য গাছও কেটে টুকরো করেছি| লিবানোনের সবচেয়ে উঁচু প্রান্তর থেকে গভীর জঙ্গল পর্য়ন্ত চষে| 24 আমি কুযো খুঁড়ে নিত্যনতুন জায়গার জল পান করেছি| মিশরের নদীর জল শুকিয়ে, খট্খটে শুকনো জমিতে পাযে হেঁটেছি|” 25 তুমি তো তাই বললে| কিন্তু প্রভু যা বলেন তা তুমি তোমার দূরদেশে শোনোনি| “এসবই আমার (ঈশ্বর) পূর্ব পরিকল্পিত| সেই অনাদি-অনন্তকাল থেকে আমিই সব ঠিক করে ঘটিয়ে চলেছি! য়ে কারণে তুমি একের পর এক শক্তিশালী দেশ ধ্বংস করে, তাদের পাথরের ভগ্নস্তূপে পরিণত করতে পেরেছ| 26 এই সমস্ত দেশের লোক শক্তিহীন| এই লোকরা ভীত এবং বিভ্রান্ত তারা জমিতে ঘাস ও গাছপালা এবং বাড়ীর ছাদের উপর ঘাস ও গাছপালা বড় না হতেই মারা যায়| 27 আমি এটা জানি তুমি কখন বসে থাকো, কখন আসো, কখন যাও এবং কখন তুমি আমার বিরুদ্ধে| 28 তুমি কখন আমাকে অপমান করো, কখন তোমার স্?ীত নাসা শূন্যে তুলে গর্ব কর, সে সবই আমি খেযাল রাখি| এবার তাই আমি তোমার এই স্?ীত নাসায় দড়ি বেঁধে তোমায় কলুর বলদের মতো ঘোরাবো আর জাবর কাটাবো, ঠিক য়ে ভাবে তোমায় টেনে তুলেছিলাম সে ভাবেই এক ফুঁযে তোমায় নীচে ফেলবো|” 29 “এটি হবে তোমার পক্ষে একটি চিহ্নস্বরূপ| এবছর তুমি মাঠে য়ে শস্য আপনিই জন্মায় তাই খাবে| পরের বছর তুমি বীজ থেকে য়ে শস্য হয় তাই খাবে| আর তার পরের বছর, তৃতীয় বছরে তুমি তোমার নিজের বোনা বীজের শস্য থেকে খেতে পারবে| এর থেকেই, আমি য়ে তোমার সহায় তা প্রমাণিত হবে| তুমি দ্রাক্ষা ক্ষেতে গাছ পুঁতে সেই দ্রাক্ষা নিজে খাবে| 30 যিহূদার য়ে সমস্ত লোক পালিয়ে গিয়েছে এবং বেঁচে আছে আবার সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে| 31 য়ে সমস্ত অল্প সংখ্য়ক লোক বাকী আছে তারা জেরুশালেম থেকে বেরিয়ে আসবে এবং কিছু সংখ্য়ক সিযোন পর্বত ছেড়ে চলে যাবে|’ 32 “তাই প্রভু অশূর-রাজ সম্পর্কে জানিয়েছেন :অশূর-রাজ এ শহরে নিজের দল নিয়ে আসবে না বা এখানে একটা তীরও ছুঁড়তে পারবে না| এ শহর আক্রমণ করে, দেযাল ভেঙে ধূলোর পাহাড়ও বানাতে পারবে না| 33 য়ে পথ দিয়ে অশূর-রাজ এসেছিল, সে পথেই আবার ফিরে যাবে| এ শহরে তার ঢোকা আর হবে না! 34 আমি এই শহরকে রক্ষা করব আর বাঁচাব| আমার নিজের জন্য আর আমার সেবক দায়ূদের জন্যই আমি এই কাজ করব|” 35 সেই রাতেই প্রভুর পাঠানো দূত গিয়ে অশূর-রাজের 1,85,000 সেনা ধ্বংস করলেন| সকালে উঠে সবাই শুধু মৃতদেহ দেখতে পেল| 36 সন্হেরীব তখন নীনবীতে ফিরে গিয়ে বাস করতে শুরু করলেন| 37 এক দিন তিনি যখন তাঁর ইষ্টদেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে পূজা করছিলেন, সে সময় তাঁর দুই পুত্র অদ্রম্মেলক ও শরেত্সর তাঁকে তরবারির আঘাতে হত্যা করে অরারট দেশে পালিয়ে গেলে, তাঁর আরেক পুত্র এসর-হদ্দোন তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন|
1 এই সময় একবার অসুস্থ হয়ে হিষ্কিয়র প্রায় মর মর অবস্থা হলে আমোসের পুত্র ভাব্বাদী যিশাইয় তাঁর সঙ্গে দেখা করে বললেন, “প্রভু তোমায় সব হাতের কাজ আর ঘর গেরস্থালী গোছগাছ করে নিতে বলেছেন| কারণ তুমি আর বাঁচবে না, তোমার মৃত্যু হবে!” 2 হিষ্কিয় তখন দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিযে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, 3 “প্রভু মনে রেখ আমি সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে মনে প্রাণে তোমার সেবা করেছি| যা কিছু ভাল কাজ তুমি করতে বলেছ সবই আমি করেছি|” তারপর হিষ্কিয় খুব কান্নাকাটি করলেন| 4 যিশাইয় যাবার পথে যখন তিনি উঠোনের মাঝখান পর্য়ন্ত গিয়েছেন, সে সময় প্রভুর বাণী তাঁর কানে প্রবেশ করল| প্রভু বললেন, 5 “যাও, আমার লোকদের নেতা হিষ্কিয়কে গিয়ে বল, ‘তোমার পিতা দায়ূদের প্রভু তোমার প্রার্থনা শুনেছেন এবং তোমার চোখের জল দেখেছেন| তাই আমি তোমায় সারিযে তুলব| আজ থেকে তিন দিনের মাথায় তুমি আবার প্রভুর মন্দিরে য়েতে পারবে| 6 আর আমি তোমার পরমাযু আরো 15 বছর বাড়িযে দেব| তোমাকে আর এই শহরকে অশূর-রাজের কবল থেকে বাঁচিয়ে, আমি এই শহর রক্ষা করব| আমি আমার নিজের জন্য এবং আমার সেবক দায়ূদকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থেই এই কাজ করব|”‘ 7 যিশাইয় তখন বললেন, “ডুমুর ফল বেটে রাজার ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দাও|”কথা মতো হিষ্কিয়র ক্ষতস্থানে ডুমুরের প্রলেপ লাগাতে হিষ্কিয় সুস্থ হয়ে উঠলেন| 8 হিষ্কিয় বললেন, “আমি কি করে বুঝব য়ে প্রভু আবার আমায় সারিযে তুলবেন, আর তিন দিনের মাথায় আমি তাঁর মন্দিরে য়েতে পারব?” 9 যিশাইয় বললেন, “তুমি কি চাও? ছায়াটা কি দশ পা এগিয়ে যাবে, না দশ পা পিছিযে যাবে?প্রভু য়ে কথা বলেছেন তাহা য়ে সফল করবেন তাহার এই চিহ্ন তোমার জন্য|” 10 হিষ্কিয় উত্তর দিলেন, “না না, ছায়ার পক্ষে এগিয়ে চলাটাই সহজ! আপনি বরঞ্চ আহসের সিঁড়িতে ছায়াটাকে দশ পা পিছু হটিযে দিন|” 11 যিশাইয় তখন প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন এবং প্রভু সেই ছায়াটাকে আহসের সিঁড়িপথে দশ পা পিছিযে দিলেন যেখানে সেটা একটু আগেই ছিল|” 12 সেসময়ে বাবিলের রাজা ছিলেন বলদনের পুত্র বরোদক্বলদন্| হিষ্কিয়র অসুস্থতার কথা শুনে তিনি লোক মারফত্ তাঁর জন্য চিঠি ও একটি উপহার পাঠিয়েছিলেন| 13 হিষ্কিয় বাবিলের এই ব্যক্তিদের স্বাগত জানিয়ে তাঁদের রাজপ্রাসাদের ও তাঁর রাজত্বের সোনা, রূপো, মশলাপাতি, দুর্মূল্য আতর, অস্ত্রশস্ত্র ও রাজকোষের যা কিছু সম্ভার, তা দেখিয়েছিলেন| সারা রাজ্যে এমন কিছু ছিল না যা হিষ্কিয় তাদের দেখান নি| 14 তখন ভাব্বাদী যিশাইয় হিষ্কিয়র কাছে এসে প্রশ্ন করলেন, “এরা কোত্থেকে এসেছে? কি বলছে?”হিষ্কিয় বললেন, “এরা বাবিল নামে বহু দূরের এক দেশ থেকে এসেছে|” 15 যিশাইয় জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার প্রাসাদে ওরা কি দেখল?”হিষ্কিয় বললেন, “সবই দেখেছে| রাজকোষে এমনকোন জিনিস নেই, যা আমি ওদের দেখাই নি|” 16 তখন যিশাইয় হিষ্কিয়কে বললেন, “প্রভু যা বলছেন মন দিয়ে শোনো| তিনি বলছেন, 17 “শীঘ্রই এমন দিন আসছে যখন তোমার রাজপ্রাসাদের সবকিছু, যা কিছু তোমার পূর্বপুরুষরা আজ পর্য়ন্ত সঞ্চয় করে গিয়েছেন, বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে! কিছুই আর পড়ে থাকবে না| 18 বাবিলের লোরা তোমার পুত্রদেরও সেখানে নিয়ে যাবে এবং তাদের নপুংসক করে বাবিলের রাজপ্রাসাদে রাখা হবে|” 19 হিষ্কিয় তখন যিশাইয়কে বললেন, “খবরটা বেশ ভালই! কারণ তিনি ভাবলেন, আমার জীবিত কালে শান্তি বজায় থাকলেই আমি খুশী!” 20 হিষ্কিয় যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন, য়েমন করে তিনি জলের ডোবা ও সুড়ঙ্গ গড়েছিলেন এবং শহরের ভেতরে জল এনেছিলেন, সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 21 হিষ্কিয়র মৃত্যু হলে তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হলে তাঁর পুত্র মনঃশি নতুন রাজা হলেন|
1 মাত্র 12 বছর বযসে রাজা হয়ে মনঃশি মোট 55 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন| তাঁর মায়ের নাম ছিল হিফ্সীবা| 2 প্রভু য়ে সব পাপাচরণ করতে বারণ করেন মনঃশি সেসবই করেছিলেন| ইতিপূর্বে য়ে সব ভযঙ্কর পাপাচারের জন্য প্রভু বিভিন্ন জাতিকে দেশচ্য়ূত করেছিলেন, মনঃশি সেই সমস্ত পাপাচরণ করেন| 3 তাঁর পিতা হিষ্কিয় য়ে সমস্ত উচ্চস্থান ভেঙে দিয়েছিলেন, মনঃশি আবার নতুন করে সেই সব বেদী নির্মাণ করেছিলেন| বাল মূর্ত্তির পূজার জন্য বেদী বানানো ছাড়াও, ইস্রায়েলের রাজা আহাবের মতই মনঃশি আশেরার খুঁটি পুঁতেছিলেন| তিনি আকাশের তারাদেরও পূজা করতেন| 4 মূর্ত্তিসমূহের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে তিনি প্রভুর প্রিয ও পবিত্র মন্দিরের মধ্যেও বেদী বানিয়েছিলেন| (এই সেই জায়গা যেখানে প্রভু বলেছিলেন, “আমি জেরুশালেমে আমার নাম স্থাপন করব|”) 5 মন্দিরের দুটো উঠোনে তিনি আকাশের নক্ষত্ররাজির জন্য বেদী বানান| 6 তাঁর নিজের পুত্রকে তিনি য়জ্ঞবেদীর আগুনে আহুতি দেন| ভবিষ্যত্ জানার জন্য তিনি প্রেতাত্মা ও পিশাচদের কাছে যাতাযাত করতেন|প্রভুকে অসন্তুষ্ট করার মত আরো অনেক কাজই মনঃশি করেছিলেন| ফলতঃ প্রভু খুবই রুদ্ধ হয়েছিলেন| 7 মনঃশি পাথর কুঁদে আশেরার একটা মূর্ত্তি বানিয়ে সেটাকে মন্দিরে বসিযেছিলেন| প্রভু দায়ূদ ও তাঁর পুত্র শলোমনকে বলেছিলেন, “সমস্ত শহরের মধ্যে থেকে আমি জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছি| এখানকার এই মন্দিরে আমার নাম চির দিনের জন্য থাকবে| 8 ইস্রায়েলীয়দের পূর্বপুরুষদের আমি য়ে ভূখণ্ড দিয়েছিলাম, ইস্রায়েলীয়রা যদি আমায় মান্য করে চলে, আমার দাস মোশির দেওয়া বিধি ও আদেশগুলো অনুসরণ করে, তাহলে সেই ভূখণ্ড থেকে আমি কখনও তাদের উত্খাত করব না|” 9 কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের কথা গ্রাহ্য করল না| মনঃশি লোকদের বিপথে চালনা করলেন, যাতে তারা আরো বেশী পাপ কাজ করল সেই সব জাতিসমূহের চেয়েও, যাদের প্রভু ধ্বংস করেছিলেন এবং ইস্রায়েলীয়দের দিয়ে দিয়েছিলেন| 10 প্রভু তাঁর দাস ভাব্বাদীদের মাধ্যমে বলে পাঠিয়েছিলেন: 11 “যিহূদার রাজা মনঃশি, ইমোরীযদের থেকেও বহুগুণে ঘৃণ্য অপরাধ করেছে এবং মূর্ত্তিপূজা করে যিহূদাকেও পাপের পথে ঠেলে দিয়েছে| তাই 12 ইস্রায়েলের প্রভু বলেছেন, ‘জেরুশালেম ও যিহূদায় আমি এমন সঙ্কট ঘনিয়ে তুলব য়ে, য়ে শুনবে সেই শিউরে উঠবে, আতঙ্কিত হবে| 13 আমি জেরুশালেমের ওপর শমরিয়াতে য়ে সূত্র এবং আহাবকুলে য়ে ওলন ব্যবহার করেছিলাম, তা বিস্তৃত করব| মানুষ য়ে ভাবে থালা মুছে, উপুড় করে রাখে ঠিক সে ভাবেই আমি জেরুশালেমের সব কিছু ওলট-পালট করে খল নলচে পালেট দেব| 14 তবে আমার কিছু ভক্ত থাকবে, যাদের আমি রেহাই দিলেও, শএুর হাত থেকে তারা বাঁচতে পারবে না| শএুরা তাদের বন্দী করে সঙ্গে নিয়ে যাবে| তারা য়ে রকম মূল্যবান জিনিসের মতো যাকে সৈন্যরা যুদ্ধে পেয়ে থাকে| 15 কারণ য়ে সব কাজ করাকে আমি অন্যায বলেছিলাম ওরা তাই করেছে| মিশর থেকে ওদের পূর্বপুরুষরা আসার পর থেকে এই ভাবে এমে এমে ওরা আমায় ক্ষেপিযে তুলেছে| 16 আর মনঃশি বহু নির্দোষ ব্যক্তিকেও হত্যা করেছে| মনঃশি জেরুশালেম রক্তে পরিপূর্ণ করেছে| তার এই সমস্ত পাপ, পক্ষান্তরে যিহূদারই পাপের ভার বৃদ্ধি করেছে| প্রভু যা করতে বারণ করেছেন, মনঃশি তা করতে যিহূদাকে বাধ্য করেছে|”‘ 17 মনঃশি য়ে সমস্ত কাজ করেছিলেন, এমন কি তাঁর সমস্ত পাপাচরণের কথাও ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 18 মনঃশির মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁর বাড়ীর “বাগান উষে” সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর পুত্র আমোন নতুন রাজা হলেন| 19 আমোন 22 বছর বযসে রাজা হয়ে মাত্র দু বছরের জন্য জেরুশালেম শাসন করেছিলেন| তাঁর মা ছিলেন য়ট্বাস্থ হারুষের কন্যা মশুল্লেমত্| 20 পিতা মনঃশির মতোই আমোনও প্রভুর মনঃপূত নয় এমন সমস্ত কাজকর্ম করেছিলেন| 21 তাঁর পিতা য়ে সমস্ত মূর্ত্তিগুলোকে পূজা করতেন, আমোনও তাদের পূজা করতেন| আমোন তাঁর পিতার মতোই জীবনযাপন করেছেন| 22 তিনি তাঁর প্রভু পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের অভিপ্রায় অনুযায়ীজীবনযাপন না করে তাঁকে পরিত্যাগ করেন| 23 আমোনের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে তাঁর নিজের বাড়িতেই হত্যা করে| 24 রুদ্ধ সাধারণ মানুষ আমোনের বিরুদ্ধে চএান্তকারীদের হত্যা করে তাঁর পুত্র য়োশিযকে তাঁর জায়গায় নতুন রাজা করল| 25 আমোন আর যা কিছু করেছিলেন সে সমস্তই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 26 আমোনকেও তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে উষের বাগানে সমাধিস্থ করা হয়| এরপর তাঁর পুত্র য়োশিয রাজ্য পরিচালনা শুরু করেন|
1 য়োশিয যখন যিহূদার সিংহাসনে বসেন তাঁর বয়স ছিল মাত্র আট বছর! তিনি মোট 31 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা ছিলেন বস্কতীর আদাযার কন্যা য়িদীদা| 2 য়োশিয প্রভুর অভিপ্রায় অনুযাযী, তিনি য়ে ভাবে বলেছিলেন ঠিক সে ভাবেই রাজ্য শাসন করেছিলেন| তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতোই ঈশ্বরকে অনুসরণ করেছিলেন| 3 তাঁর রাজত্বের 18তম বছরে, য়োশিয মশুল্লমের পৌত্র ও অত্সলিযের পুত্র সচিব শাফনকে প্রভুর মন্দিরে পাঠিয়ে ছিলেন| 4 “প্রধান যাজক হিল্কিযকে লোকরা প্রভুর মন্দিরে যা প্রণামী দেয় তা সংগ্রহ করতে বলেন| তিনি বলেন, “দারোযানরা দর্শনার্থীদের কাছ থেকে এই প্রণামী নিয়ে থাকে| 5 যাজকদের এই টাকা দিয়ে মিস্ত্রি ডেকে প্রভুর মন্দির সারানো উচিত্| যাজক য়েন অবশ্যই য়ে সমস্ত লোক প্রভুর মন্দির সারানোর কাজের তদারকি করবে, তাদের হাতে এই সব টাকাপয়সা তুলে দেন| 6 এই টাকা দিয়ে ছুতোর মিস্ত্রি, পাথর খোদাইকার, পাথর কাটিযেদের মাইনে দেওয়া ছাড়াও য়েন প্রয়োজন মতো মন্দির সারানোর কাঠ, পাথর ও অন্যান্য জিনিসপত্র কেনা হয়| 7 মিস্ত্রিদের গুণে টাকা পয়সা দেবার কোন দরকার নেই, কারণ ওরা সকলেই খুব বিশ্বাসী|” 8 প্রধান যাজক হিল্কিয, সচিব শাফনকে বললেন, “দেখো, আমি প্রভুর মন্দিরের ভেতরে বিধিপুস্তক খুঁজে পেয়েছি!” তিনি শাফনকে পুস্তকটি দিলে শাফন তা পড়ে দেখলেন| 9 অতঃপর সচিব শাফন গিয়ে রাজা য়োশিযকে মন্দির সম্পর্কিত সব কথাবার্তা বললেন| তিনি বললেন, “আপনার কর্মচারীরা মন্দিরের সমস্ত প্রণামী সংগ্রহ করে, প্রভুর মন্দির সংস্কারের জন্য তা যারা তদারকি করবে তাদের হাতে তুলে দিয়েছে|” 10 তখন সচিব শাফন রাজাকে বলল, “যাজক হিল্কিয, আমাকে এই পুস্তকটি দিয়েছেন|” একথা বলে শাফন রাজাকে পুস্তকটি পড়ে শোনালেন| 11 বিধিপুস্তকে বর্ণিত কথা শুনে মহারাজ দুঃখ ও শোক প্রকাশের জন্য নিজের পরিধেয পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন| 12 তারপর তিনি যাজক হিল্কিয, শাফনের পুত্র অহীকাম, মীখায়ের পুত্র অক্বোর, সচিব শাফন ও তাঁর নিজস্ব ভৃত্য অসায়কে ডেকে নির্দেশ দিলেন, 13 “আমার হয়ে, আমার প্রজাদের হয়ে, সমগ্র যিহূদার হয়ে প্রভুকে জিজ্ঞেস কর আমরা কি করব? খুঁজে পাওয়া এই বিধিপুস্তকের বাণী সম্পর্কেও তাঁকে প্রশ্ন করো| প্রভু আমাদের প্রতি রুদ্ধ হয়েছেন কারণ আমাদের পূর্বপুরুষরা এই বিধিপুস্তকের কথা আমাদের যা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা মেনে চলেন নি|” 14 যাজক হিল্কিয, অহীকাম, অক্বোর, শাফন আর অসায় তখন মহিলা ভাব্বাদিনী হুল্দার কাছে গেলেন| হুল্দা ছিলেন বস্ত্রাগারের তত্ত্বাবধায়ক হর্হসের পৌত্র, তিক্বেরের পুত্র ও শল্লুমের স্ত্রী, দ্বিতীয় বিভাগে থাকতেন| তাঁরা সকলে জেরুশালেমের কাছেই হুল্দার কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে কথাবার্তা বললেন| 15 হুল্দা তাঁদের জানালেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলছেন: ‘তোমাকে আমার কাছে য়ে পাঠিয়েছে তাকে বল: 16 প্রভু বলছেন: আমি এই স্থান এবং এখানকার বাসিন্দাদের জীবনে দুর্য়োগ ঘনিয়ে তুলছি| এই দুর্য়োগের কথা, যিহূদার রাজা ইতিমধ্যেই য়ে বই পড়েছেন তাতে বর্ণিত আছে| 17 যিহূদার লোকরা আমায় ত্যাগ করে অন্য মূর্ত্তির সামনে ধুপধূনো দিয়েছে| তারা মূর্ত্তি পূজা করেছে| এসব করে আমায় রুদ্ধ করে তুলেছে| আমি তাই এই জায়গার ওপর আমার রোধ প্রকাশ করব| আগুনের শিখার মতো আমার রোধাগ্ন কেউ নির্বাপিত করতে পারবে না!’ 18 “যিহূদার রাজা য়োশিয তোমাদের প্রভুর কাছে পরামর্শ নিতে পাঠিয়েছেন, তাঁকে গিয়ে তোমরা প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলা য়ে সব কথা শুনলে তা জানাও| তোমরা সকলেই এখানে আর এখানকার লোকদের জীবনে কি ঘটতে চলেছে শুনলে| 19 তোমাদের হৃদয় কোমল, আমি জানি এসব ভযঙ্কর কথা শুনে তোমাদের খুব খারাপ লেগেছে| তোমরা তোমাদের পোশাক ছিঁড়ে, কাঁদতে কাঁদতে শোকপ্রকাশ করেছ বলেই আমি তোমাদের কথা শুনেছি, প্রভু একথা বলেন| 20 ‘যাও, তোমরা সকলেই অন্তত শান্তিতে মরতে পারবে| প্রভু বলেছেন, ‘তিনি জেরুশালেমে য়ে দুর্য়োগ ঘনিয়ে তুলবেন তা তোমাদের দেখে য়েতে হবে না|”‘তখন যাজক হিল্কিয, অহীকাম, অক্বোর, শাফন আর অসায় রাজাকে গিয়ে এসব কথা জানালেন|
1 রাজা য়োশিয যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত নেতাদের এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে নির্দেশ দিলেন| 2 তারপর তিনি প্রভুর মন্দিরে গেলেন| যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত লোক ও যাজকগণ, ভাব্বাদীগণ, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মহান ব্যক্তিও তাঁর সঙ্গে মন্দিরে গেল| তারপর তিনি প্রভুর মন্দিরে খুঁজে পাওয়া বিধিপুস্তকটি সবাইকে উচ্চস্বরে পড়ে শোনালেন| 3 স্তম্ভের পাশে দাঁড়িয়ে রাজা য়োশিয প্রভুর কাছে তাঁর সমস্ত বিধি ও নীতিগুলি মেনে চলবেন বলে প্রতিজ্ঞা করলেন| তিনি কাযমনোবাক্যে এই সমস্ত ও বিধিপুস্তকে যা কিছু বর্ণিত আছে তা পালনে প্রতিশ্রুত হলেন| সমস্ত লোক, রাজার প্রার্থনায য়ে তাদেরও মত আছে তা দেখাতে উঠে দাঁড়ালো| 4 তারপর রাজা য়োশিয, প্রধান যাজক হিল্কিয, অন্যান্য যাজকদের, মন্দিরের দাররক্ষী প্রভুর মন্দির থেকে বাল মূর্ত্তি, আশেরা ও নক্ষত্রদের পূজা ও আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত সমস্ত থালা ও অন্যান্য জিনিসপত্র বের করে আনতে নির্দেশ দিলেন| এরপর তিনি এই সব কিছু জেরুশালেমের বাইরে কিদ্রোণের উপত্যকায নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে সেই ছাই বৈথেলে নিয়ে এলেন| 5 যিহূদার রাজারা হারোণের পরিবারের বাইরের কিছু কিছু সাধারণ লোককে যাজক হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন| এই সব ভ্রান্ত যাজকরা জেরুশালেম ও যিহূদার সর্বত্র মূর্ত্তিদের জন্য বানানো উচ্চস্থানে বাল মূর্ত্তিকে, সূর্য়কে, চাঁদকে, এবং নক্ষত্ররাজির উদ্দেশ্যে ধুপধূনো দিতো| য়োশিয এই সব আচার বন্ধ করে দিয়েছিলেন| 6 তারপর প্রভুর মন্দির চত্বর থেকে আশেরার মূর্ত্তির জন্য পোঁতা সমস্ত খুঁটি উপড়ে তুলে শহরের বাইরে কিদ্রোণ উপত্যকায নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে, সেই ছাই সাধারণ মানুষদের কবরে ছড়িয়ে দিলেন| 7 এরপর য়োশিয প্রভুর মন্দির চত্বরের ভেতরে বসবাসকারী পুরুষদেহ ব্যবসাযীদের ঘরগুলো ভেঙে ফেললেন| গণিকারাও এই সব ঘরগুলো ব্যবহার করত এবং আশেরার মূর্ত্তির প্রতি তাদের আনুগত্য জানাতে ছোট ছোট ছাউনি টাঙাতো| 8 সে সময় যাজকরা যিহূদার বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে বসবাস করত এবং জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের বেদীতে বলিদান না করে মূর্ত্তিসমূহের জন্য সর্বত্র বানানো উঁচু বেদীগুলোয বলিদান করতো ও ধুপধূনো দিত| গেবা থেকে বের্শেবা পর্য়ন্ত সব জায়গাতেই এই বেদীগুলো ছিল| যাজকরা জেরুশালেমের মন্দিরে তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গার পরিবর্তে সাধারণ লোকদের সঙ্গে যেখানে খুশী বসে খামিরবিহীন রুটি খেত| য়োশিয সমস্ত যাজকদের জেরুশালেমে আসতে বাধ্য করে, সমস্ত উঁচু বেদী, নগর দ্বারের বাঁ পাশের যাবতীয় বেদী সবই ভেঙে দিয়েছিলেন| 9 10 হিন্নোম সোন উপত্যকার তোফতে মোলকের মূর্ত্তির উদ্দেশ্যে লোকরা বেদীতে নিজেদের ছেলেমেয়েকে আগুনে আহুতি দিত| য়োশিয এই পাপাচরণ বন্ধ করার জন্য এই বেদী এমন ভাবে ভেঙে দিয়েছিলেন যাতে তা আর ব্যবহার করা না যায়| 11 যিহূদার আগের রাজারা প্রভুর মন্দিরের প্রবেশপথে নথন মোলক নামে এক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীর ঘরের পাশে সূর্য় দেবতাকে সম্মান জানানোর জন্য একটা ঘোড়ায় টানা রথ তৈরী করে দিয়েছিলেন| য়োশিয সেই রথের ঘোড়াগুলো সরিয়ে রথটাকে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন| 12 আগেকার রাজারা আহসের বাড়ির ছাদে এবং মনঃশি প্রভুর মন্দিরের দুটো উঠোনেই মূর্ত্তিসমূহের পূজোর জন্য য়ে বেদীগুলো বানিয়েছিলেন, য়োশিয সেই সব বেদী টুকরো টুকরো করে ভেঙে, ভাঙা টুকরোগুলো কিদ্রোণ উপত্যকায ফেলে দেয়| 13 রাজা শলোমনও অতীতে জেরুশালেমের কাছে বিনাশ পাহাড়ের দক্ষিণে এই ধরণের কিছু উঁচু বেদী বানিয়েছিলেন, যেখানে সীদোনীয়দের ঘৃণ্য মূর্ত্তি অষ্টোরতের পূজার জন্য এই সব বেদী ব্যবহার করা হত| এছাড়াও মহারাজ শলোমন মোয়াবীয়দের কমোশ ও আমোনীযদের মিল্কম প্রমুখ ঘৃণ্য মূর্ত্তির জন্য য়ে সমস্ত উঁচু বেদী বানিয়েছিলেন, য়োশিয সে সমস্তই ভেঙে দিয়েছিলেন| 14 তিনি যাবতীয় স্মৃতিফলক, আশেরার খুঁটি ভেঙে দিয়ে সে সব জায়গায় নরকঙ্কাল ছড়িয়ে দেন| 15 নবাটের পুত্র যারবিয়াম ইস্রায়েলকে পাপাচরণের পথে ঠেলে দিয়েছিলেন| তিনি বৈথেলে য়ে উচ্চস্থান বানান য়োশিয তা ভেঙে ধূলোয মিশিয়ে, আশেরার খুঁটিতে আগুন ধরিযে দিলেন| 16 য়োশিয পর্বতের আশেপাশে তাকিযে অনেক কবরখানা দেখতে পেলেন| লোক পাঠিয়ে সেখান থেকে মৃত মানুষের হাড় তুলিযে এনে, য়োশিয সেই সমস্ত হাড় য়জ্ঞবেদীতে পুড়িয়ে, য়জ্ঞবেদী অশুচি করে দেন| ভাব্বাদীদের মুখ দিয়ে প্রভু, যারবিয়াম যখন সেই বেদীর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, তখনই এই সব ভবিষ্যত্বাণী করিযেছিলেন|য়োশিয চারপাশে তাকিযে সেই ভাব্বাদীদের সমাধিস্থল দেখতে পেলেন| 17 য়োশিয প্রশ্ন করলেন, “ওটা কিসের ফলক?” শহরের লোকরা তাঁকে উত্তর দিলো, “এটা সেই যিহূদা থেকে আসা ভাব্বাদীর কবর| আপনি বৈথেলের বেদীতে যা করলেন তা তিনি বহু দিন আগেই ভবিষ্যত্বাণী করেছিলেন|” 18 য়োশিয তখন বললেন, “দেখো ওঁর কবরে য়েন কোন রকম হাত না পড়ে| ওঁকে শান্তিতে থাকতে দাও|” তখন লোকরা শমরিয়ার সেই ভাব্বাদীর সমাধিস্থল য়ে ভাবে ছিল, সে ভাবেই অবিকৃত অবস্থায় রেখে দিল| 19 শমরিয়ায শহরগুলোয মূর্ত্তিসমূহের বেদীর আশেপাশে য়ে সমস্ত মন্দির গজিযে উঠেছিল য়োশিয সেগুলোও ভেঙে দিয়েছিলেন| ইস্রায়েলের আগেকার রাজা-রাজারা এই সমস্ত মন্দির বানিয়ে প্রভুকে খুবই অসন্তুষ্ট করে তুলেছিলেন| য়োশিয এই সব মন্দিরের দশা বৈথেলের বেদীর মতোই করেছিলেন| 20 য়োশিয শমরিয়ার উচ্চস্থানের সমস্ত যাজকদেরই হত্যা করলেন| তিনি বেদীর ওপরে মানুষের অস্থি পোড়ালেন| এই ভাবে তিনি পূজার জায়গা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 21 এরপর য়োশিয সমস্ত লোকদের নির্দেশ দিলেন, “বিধিপুস্তকে য়ে ভাবে লেখা আছে, সে ভাবে তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের জন্য নিস্তারপর্ব উদযাপন কর|” 22 ইস্রায়েলে বিচারকদের শাসনকালের পর আর কেউ এভাবে নিস্তারপর্ব উদযাপন করেনি| ইস্রায়েল বা যিহূদার আর কোন রাজাই আগে কখনও এত সমারোহের সঙ্গে নিস্তারপর্ব পালন করেন নি| 23 য়োশিযর রাজত্বের 18তম বছরে লোকরা এই নিস্তারপর্ব পালন করেছিল| 24 যিহূদা ও জেরুশালেমে লোকরা প্রেতসাধনা, ডাকিনী-পিশাচ-তন্ত্রসাধনা, মূর্ত্তিপূজা প্রভৃতি য়েসব ঘৃণ্য পাপাচরণ করত, যাজক হিল্কিযর খুঁজে পাওয়া বিধি অনুসারে য়োশিয এসবই সমূলে উত্পাটন করেন| 25 এর আগের আর কোন রাজাই য়োশিযর মত ছিলেন না| য়োশিয কাযমনোবাক্যে, সমস্ত হৃদয় ও শক্তি দিয়ে প্রভু ও মোশির বিধি অনুসরণ করে জীবনযাপন করেছিলেন| এখনো পর্য়ন্ত কোন রাজাই তাঁর মত শাসন করেন নি| 26 কিন্তু তবুও যিহূদার লোকদের ওপর থেকে প্রভুর রাগ পড়েনি| মনঃশির করা কার্য়কলাপের জন্যই প্রভু তখনও তাদের ওপর রেগে ছিলেন| 27 প্রভু বলেছিলেন, “আমি ইস্রায়েলের লোকদের তাদের বাসভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিলাম| যিহূদার সঙ্গেও আমি তাই করব| যিহূদাকে আমার দুচোখের সামনে থেকে সরিয়ে দেব| এমনকি জেরুশালেমকেও আমি আর দেখতে চাই না| হ্যাঁ, যদিও আমি নিজেই ঐ শহর বেছে নিয়ে বলেছিলাম, ‘য়ে ওখানে আমার নাম থাকবে|’ কিন্তু আমি ঐ মন্দিরটিকেও ধ্বংস করে ফেলব|” 28 য়োশিয আর যা কিছু করেছিলেন, সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 29 য়োশিযর রাজত্বকালে মিশরের ফরৌণ-নখো ফরাত্ নদীর তীরে অশূর-রাজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যান| য়োশিয মগিদ্দোতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে, দেখা হওয়া মাত্র ফরৌণ-নখো তাঁকে হত্যা করেন| 30 য়োশিযর পদস্থ আধিকারিকরা রথে করে তাঁর মৃতদেহ মগিদ্দো থেকে জেরুশালেমে নিয়ে এসে তাঁকে তাঁর পরিবারের সমাধিস্থলে সমাধি দিলেন|এরপর লোকরা য়োশিযর পুত্র যিহোয়াহসকে নতুন রাজা হিসেবে অভিষেক করলেন| 31 যিহোয়াহস 23 বছর বযসে রাজা হয়ে মাত্র তিন মাসের জন্য জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা ছিলেন লিব্নার য়িরমিযের কন্যা হমূটল| 32 প্রভু য়ে সব কাজ করতে বারণ করেছিলেন, যিহোয়াহস সেই সমস্ত কাজ করেছিলেন| তিনি তাঁর অধিকাংশ পূর্বপুরুষদের মতই পাপের পথ অনুসরণ করেন| 33 ফরৌণ-নখো, যিহোয়াহসকে হমাত্ দেশের রিব্লাতে জেলে আটক করেন, ফলত যিহোয়াহসের পক্ষে আর জেরুশালেমে রাজত্ব করা সম্ভব হয় নি| তাঁকে, ফরৌণ-নখো 7,500 পাউণ্ড রূপো এবং 75 পাউণ্ড সোনা দিতে বাধ্য করেছিলেন| 34 ফরৌণ, য়োশিযর আরেক পুত্র| ইলিয়াকীমকে নতুন রাজা বানিয়ে তাঁর নাম পালেট যিহোয়াকীম রাখেন| আর যিহোয়াহসকে তিনি মিশরে নিয়ে যান| সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়| 35 যিহোয়াকীম ফরৌণকে সোনা ও রূপো দিলেন| কিন্তু তিনি সাধারণ লোককে ফরৌণ-নখোকে দেওয়ার জন্য দেশে কর ধার্য়্য় করলেন তাই প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের সোনা ও রূপোর অংশ ফরৌণ-নখোকে দেওয়ার জন্য রাজা যিহোয়াকীমকে দিত| 36 যিহোয়াকীম 25 বছর বযসে রাজা হয়ে এগারো বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা ছিলেন রূমার পদাযের কন্যা সবীদা| 37 যিহোয়াকীমও প্রভু য়ে সমস্ত কাজ করতে বারণ করেন, তাঁর অধিকাংশ পূর্বপুরুষদের মত সেই সমস্ত কাজ করেছিলেন|
1 যিহোয়াকীমের রাজত্বকালে বাবিল-রাজ নবূখদ্নিত্সর যিহূদায় আসেন| তিন বছর তাঁর বশ্যতা স্বীকার করার পর যিহোয়াকীম তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন| 2 প্রভু বাবিলীয, অরামীয়, মোয়াবীয়, অম্মোনীয়দের দলকে যিহোয়াকীমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিযে তাঁকে ধ্বংস করতে পাঠিয়েছিলেন| প্রভু তাঁর সেবক ভাব্বাদীদের মুখ দিয়ে করা ভবিষ্যত্বাণী অনুযায়ীএই সমস্ত শএুদের যিহূদা ধ্বংস করার জন্য পাঠান| 3 এই ভাবেই প্রভু যিহূদাকে তাঁর চোখের সামনে থেকে সরিয়ে দেবার পরিকল্পনা করেন| মনঃশির পাপাচরণের জন্যই প্রভু এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন| 4 মনঃশি বহু নিরীহ লোককে হত্যা করে জেরুশালেম রক্তে পরিপূর্ণ করেছিলেন যা প্রভু কখনও ক্ষমা করেন নি| 5 যিহোয়াকীম অন্যান্য য়ে সমস্ত কাজ করেছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 6 যিহোয়াকীমের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়| তাঁর পরে, তাঁর পুত্র যিহোয়াখীন নতুন রাজা হলেন| 7 এদিকে বাবিল-রাজ মিশরের খাঁড়ি থেকে শুরু করে ফরাত্ নদী পর্য়ন্ত সমস্ত অঞ্চল দখল করায মিশর-রাজ তাঁর দেশ ছেড়ে আর বেরোনোর চেষ্টাই করেন নি| এই সমস্ত অঞ্চলই আগে তাঁর শাসনাধীন ছিল| 8 যিহোয়াখীন 18 বছর বযসে রাজা হবার পর মাত্র তিন মাস জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা ছিলেন জেরুশালেমের ইল্নাথনের কন্যা নহুষ্টা| 9 যিহোয়াখীন তাঁর পিতার মতই প্রভু য়ে সমস্ত কাজ করতে বারণ করেছিলেন, সেই সব কাজ করেছিলেন| 10 সেই সময়, নবূখদ্নিত্সরের সেনাপতিরা এসে চারপাশ থেকে জেরুশালেম ঘিরে ফেলেছিলেন| 11 তারপর নবূখদ্নিত্সর বয়ং শহরে আসেন| 12 যিহূদার রাজা যিহোয়াখীন তাঁর মা, সেনাপতিদের, নেতাদের ও আধিকারিকদের সকলকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে বাবিলরাজ তাঁকে বন্দী করেন| নবূখদ্নিত্সরের শাসন কালের অষ্টম বছরে এই ঘটনা ঘটেছিল| 13 নবূখদ্নিত্সর জেরুশালেমের প্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ থেকে সমস্ত সম্পদ অপহরণ করে নিয়ে যান| রাজা শলোমন প্রভুর মন্দিরে য়ে সমস্ত সোনার থালা বসিযেছিলেন, প্রভুর ভবিষ্যত্বাণী অনুযাযীই নবূখদ্নিত্সর মন্দির থেকে সে সমস্ত থালা খুলে নিয়ে গিয়েছিলেন| 14 নবূখদ্নিত্সর নেতা ও ধনীলোক সহ জেরুশালেম থেকে 10,000 ব্যক্তিকে বন্দী করে নিয়ে যান| হতদরিদ্র লোক ছাড়া, কারিগর থেকে শ্রমিক সমস্ত লোককেই তিনি বন্দী করেন| 15 রাজা যিহোয়াখীন ও তাঁর মা, স্ত্রীদের, আধিকারিক ও প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন| 16 মোট 7,000 দক্ষ সৈনিক ও 1,000 কুশলী কারিগরকে বাবিলরাজ নবূখদ্নিত্সর বাবিলে বন্দী করে নিয়ে যান| 17 বাবিল-রাজ নবূখদ্নিত্সর, যিহোয়াখীনের কাকা মত্তনিয়ের নাম পালেট সিদিকিয় রেখে তাঁকে রাজা করেছিলেন| 18 সিদিকিয় 21 বছর বযসে রাজা হয়ে 11 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন| তাঁর মা ছিলেন লিব্নার য়িরমিযের কন্যা হমূটল| 19 যিহোয়াখীনের মতই সিদিকিয়, প্রভু যা কিছু করতে বারণ করেছিলেন সে সমস্ত কাজই করেছিলেন| 20 জেরুশালেম ও যিহূদার ওপর প্রভু এত রুদ্ধ হয়েছিলেন য়ে প্রভু এই দুই দেশকে তাঁর চোখের সামনে থেকে মুছে ফেলেন|সিদিকিয় বাবিল-রাজের কর্ত্তত্ব অস্বীকার করেছিলেন|
1 তাই বাবিল-রাজ নবূখদ্নিত্সর, তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী নিয়ে জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এলেন| সিদিকিয়র রাজত্ব কালের নবম বছরের 10 মাসের 10 দিনে এই ঘটনা ঘটেছিল| জেরুশালেম শহরে যাতাযাত বন্ধ করতে নবূখদ্নিত্সর শহরের চারপাশে তাঁর সেনাবাহিনী মোতাযেন করে একটা দেওয়াল বানিয়ে শহরটা অবরোধ করেছিলেন| 2 এই ভাবে তাঁর সেনাবাহিনী সিদিকিয়র রাজত্বের একাদশ বছর পর্য়ন্ত জেরুশালেম ঘিরে রেখেছিল| 3 এদিকে শহরের ভেতরে খাদ্যাভাব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল| চতুর্থ মাসের 9তম দিনের পর থেকে শহরে সাধারণ মানুষের খাবার মত এককণা খাবারও আর অবশিষ্ট ছিল না| 4 শেষ পর্য়ন্ত নবূখদ্নিত্সরের সেনাবাহিনী শহরের প্রাচীর ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়লে, সে রাতেই বাগানের গুপ্তপথের ফাঁপা দেওয়ালের মধ্যে দিয়ে রাজা সিদিকিয় ও তাঁর সেনাবাহিনীর লোকরা পালিয়ে যায়| যদিও শএুপক্ষের সেনাবাহিনী সারা শহর ঘিরে রেখেছিল, কিন্তু তবুও সিদিকিয় ও তাঁর পার্শ্বচররা মরুভূমির পথে পালিয়ে য়েতে সক্ষম হন| 5 কিন্তু বাবিলের সেনাবাহিনী তাঁদের ধাওযা করে য়িরীহোর কাছে রাজা সিদিকিয়কে বন্দী করে| সিদিকিয়র সমস্ত সেনা তাঁকে একলা ফেলে রেখে পালিয়ে যায়| 6 বাবিলীযরা তাঁকে বন্দী করে বাবিলে রাজার কাছে নিয়ে যায় যা এখন ছিল রিব্লাতে, যিনি তাকে শাস্তি দেন| 7 তারা সিদিকিয়র সামনেই তাঁর চার পুত্রকে হত্যা করে, তাঁর চোখ গেলে দিয়ে শিকল পরিযে তাঁকে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল| 8 নবূখদ্নিত্সরের বাবিল শাসনের উনিশ বছরের পঞ্চম মাসের 7তম দিনে নবূষরদন জেরুশালেমে আসেন| নবূষরদন ছিলেন তাঁর সর্বাপেক্ষা রণকুশলী সৈন্যদের সেনাপতি| 9 তিনি প্রভুর মন্দির এবং রাজপ্রাসাদ পুড়িয়ে ফেললেন| তিনি ছোট বড় সমস্ত ঘর বাড়ীও ধ্বংস করে দিয়েছিলেন| 10 এরপর, নবূখদ্নিত্সরের সৈন্যবাহিনীর সেনারা জেরুশালেমের চারপাশের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে 11 অবশিষ্ট য়ে কজন লোক তখন পড়ে ছিল তাদের বন্দী করে নিয়ে যায়| এমনকি য়ে সমস্ত লোক আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিল তাদেরও রেহাই দেওয়া হয় নি| 12 নবূষরদন একমাত্র দীনদরিদ্র লোকদের দ্রাক্ষা ক্ষেত ও শস্য ক্ষেতের দেখাশোনা করার জন্য ফেলে রেখে গিয়েছিলেন| 13 বাবিলীয সেনাবাহিনী প্রভুর মন্দিরের পিতলের সমস্ত জিনিসপত্র ভেঙে টুকরো টুকরো করে| পিতলের জলাশয, সেই ঠেলাগাড়িটা কিছুই তারা ভাঙতে বাকি রাখেনি| তারপর সেই পিতলের ভাঙা টুকরোগুলো তারা বাবিলে নিয়ে যায়| 14 গাছের টব, কোদাল, বাতিদানের শিখা উস্কানোর যন্ত্র থেকে শুরু করে পিতলের থালা, চামচ, কড়াই, পাত্র, 15 সোনা ও রূপোর সমস্ত জিনিসপত্রই নবূষরদন সঙ্গে করে নিয়ে যান| 16 তিনি যা নিয়েছিলেন তার তালিকা নীচে দেওয়া হল:27 ফুট দৈর্ঘ্যের 2টি পিতলের স্তম্ভ, স্তম্ভের মাথার ওপরের কারুকার্য়খচিত 4 1,2 ফুট উঁচু গম্বুজ, পিতলের বড় জলাধার, প্রভুর মন্দিরের জন্য শলোমনের তৈরী করা ঠেলাগাড়িটা; সব মিলিয়ে এগুলোর ওজন সঠিক কত ছিল তা বলাও কঠিন! 17 18 মন্দির থেকে নবূষরদন, প্রধান যাজক সরায, সহকারী যাজক সফনিয়, প্রবেশদ্বারের তিন জন দারোযানকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিলেন| 19 আর শহর থেকে তিনি 1 জন সেনাসচিব, রাজার 5 জন পরামর্শদাতা, সেনাপ্রধানের ব্যক্তিসচিব যিনি লোকদের মধ্যে থেকে বাছাই করে সেনা নিযোগ করতেন, এরা ছাড়াও 60 জন সাধারণ মানুষকে বন্দী করেন| 20 তারপর নবূষরদন এদের সবাইকে হমাতের রিব্লায বাবিল-রাজের কাছে নিয়ে গেলে, বাবিল-রাজ সেখানেই তাদের হত্যা করেন| আর যিহূদার লোকদের বন্দী করে তাঁরা সঙ্গে নিয়ে যান| 21 22 বাবিল-রাজ নবূখদ্নিত্সর কিছু লোককে যিহূদায় রেখে গিয়েছিলেন| তিনি শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিযকে এই সমস্ত লোকদের শাসন করার জন্য শাসক হিসেবে যিহূদায় বসিযে যান| 23 এদিকে এ খবর পেয়ে নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল, কারেযের পুত্র য়োহানন, নটোফাতীয তনহূমতের পুত্র সরায আর মাখাথীযের পুত্র যাসনিয প্রমুখ সেনাবাহিনীর প্রধানরা তাদের দলবল নিয়ে মিস্পাতে গদলিযর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| 24 গদলিয তাদের আশ্বস্ত করে বললেন, “বাবিলীয রাজকর্মচারীদের ভয পাবার কোন কারণ নেই| তোমরা যদি এখানে থেকে বাবিল-রাজের অধীনে কাজ কর তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে|” 25 কিন্তু নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল ছিলেন রাজপরি-বারের সদসস্য এভাবে সাতমাস কাটার পর তিনি ও তাঁর দলের দশ জন মিলে গদলিয ও সমস্ত ইহুদীদের হত্যা করলেন| মিস্পাতে গদলিযর সঙ্গে য়ে সমস্ত বাবিলীযরা বাস করছিল তারাও রক্ষা পেল না| 26 তারপর সেনাবাহিনীর লোক থেকে শুরু করে ছোট বড় সবাই বাবিলীযদের ভয়ে মিশরে পালিয়ে গেল| 27 পরবর্তীকালে ইবিল-মরোদক বাবিলের রাজা হলেন| তিনি যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমকে তাঁর বন্দীত্বের 37 বছরের মাথায় জেল থেকে মুক্ত করলেন| মরোদকের রাজত্বের বারো মাসের 27 দিনের মাথায় এই ঘটনা ঘটেছিল| 28 তিনি যিহোয়াকীমের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছিলেন এবং রাজসভায অন্যান্য রাজাদের তুলনায় তাঁকে আরও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসার অধিকার দিয়েছিলেন| 29 মরোদক, যিহোয়াকীমের আসামীর পোশাক খুলে দিয়েছিলেন| এবং জীবনের বাকী কটা দিন যিহোয়াকীম মরোদকের সঙ্গে একই টেবিলে বসে খাওয়া দাওয়া করেন| 30 রাজা ইবিল-মরোদক যিহোয়াকীমকে এরপর থেকে পোষণ করছিলেন|
1 আদম, শেখ, ইনোশ, কৈনন, মহললেল, য়েরদ, হনোক, মথূশেলহ, লেমক, নোহ| 2 3 4 নোহর তিন পুত্র| তাদের নাম ছিল শেম, হাম এবং য়েফত্| 5 য়েফতের সাত পুত্রের নাম হল: গোমর, মাগোগ, মাদয়, যবন, তুবল, মেশক আর তীরস| 6 গোমরের পুত্রদের নাম: অস্কিনস, দীফত্ আর তোগর্ম| 7 যবনের পুত্ররা হল: ইলীশা, তর্শীশ, কিত্তীম ও রোদানীম| 8 হামের পুত্রদের নাম: কূশ, মিশর, পূট ও কনান| 9 কূশের পুত্রদের নাম: সবা, হবীলা, সপ্তা, রয়মা ও সপ্তকা| রয়মার পুত্রদের নাম: শিবা ও দদান| 10 কূশের এক উত্তরপুরুষের নাম ছিল নিম্রোদ| তিনি বড় হয়ে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ও সাহসী যোদ্ধা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন| 11 লূদ, অনাম, লহাব, নপ্তুহ, 12 পথ্রোষ, কস্লূহ, কপ্তোর- এদের সকলের পিতা ছিলেন মিশর| কস্লূহ ছিলেন পলেষ্টীয়দের পূর্বপুরুষ| 13 কনানের প্রথম পুত্র ছিল সীদোন| 14 কনান- যিবূষীয়, ইমোরীয়, গির্গাশীয, 15 হিব্বীয়, অর্কীয, সীনীয, অর্বদীয, 16 সমারীয আর হমাতীযদেরও পূর্বপুরুষ| 17 শেমের পুত্রদের নাম: এলম, অশূর, অর্ফক্ষদ, লূদ এবং অরাম| অরামের পুত্ররা হল: ঊষ, হূল, গেথর ও মেশেক| 18 অর্ফক্ষদ ছিলেন শেলহর পিতা এবং এবরের পিতামহ| দিক্ল 19 এবরের দুই পুত্রের এক জনের নাম ছিল পেলগ, কারণ তাঁর জন্মের পর থেকেই পৃথিবীর লোকরা বিভিন্ন ভাষাগোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে যায়| পেলগের ভাইযের নাম ছিল য়ক্তন| ( 20 যক্তন পুত্রদের নাম: অল্মোদদ, শেলফ, হত্সর্মাবত্, য়েরহ, 21 হদোরাম, ঊসল, দিক্ল, 22 এবল, অবীমায়েল, শিবা, 23 ওফীর, হবীলা ও য়োববের পিতা ছিল| ইহারা সকলে যক্তনের পুত্র|) 24 শেমের উত্তরপুরুষ হল অর্ফক্ষদ, শেলহ, 25 এবর, পেলগ, রিয়ূ, 26 সরূগ, নাহোর, তেরহ আর 27 অব্রাম (অব্রাম যাকে অব্রাহামও বলা হয়|) 28 অব্রাহামের দুই পুত্রের নাম ইসহাক ও ইশ্মায়েল| 29 এদের উত্তরপুরুষ নিম্নরূপ:ইশ্মায়েলের প্রথম ও বড় ছেলের নাম নবায়োত্| তাঁর অন্যান্য পুত্রদের নাম হল: কেদর, অদ্বেল, মিব্সম, 30 মিশ্ম, দূমা, মসা, হদদ, তেমা, 31 যিটূর, নাফীশ ও কেদমা| 32 অব্রাহামের উপপত্নী কটূরা- সিম্রণ, যক্ষণ, মদান, মিদিয়ন, যিশ্বক ও শূহ প্রমুখ পুত্রদের জন্ম দিয়েছিলেন|যক্ষণের পুত্রদের নাম: শিবা ও দদান| 33 মিদিয়নের পুত্রদের নাম: ঐফা, এফর, হনোক, অবীদ আর ইল্দায়া|এঁরা সকলেই ছিলেন কটূরার উত্তরপুরুষ| 34 অব্রাহামের এক পুত্রর নাম ইসহাক| ইসহাকের দুই পুত্র- এষৌ আর ইস্রায়েল| 35 এষৌর পুত্রদের নাম: ইলীফস, রূয়েল, যিয়ূশ, যালম আর কোরহ| 36 ইলীফসের পুত্রদের নাম: তৈমন, ওমার, সফী, গয়িতম আর কনস| ইলীফস আর তিথর অমালেক নামেও এক পুত্র ছিল| 37 রূয়েলের পুত্রদের নাম: নহত্, সেরহ, শম্ম আর মিসা| 38 সেয়ীরের পুত্রদের নাম: লোটন, শোবল, সিবিয়োন, অনা, দিশোন, এত্সর আর দীশন| 39 লোটনের পুত্রদের নাম: হোরি আর হোমম| লোটনের তিথা নামে এক বোনও ছিল| 40 শোবলের পুত্রদের নাম: অলিয়ন, মানহত্, এবল, শফী আর ওনম|সিবিয়োনের পুত্রদের নাম: অয়া আর অনা| 41 অনার পুত্র হল দিশোন|দিশোনের পুত্রদের নাম: হম্রণ, ইশ্বন, যিত্রণ আর করাণ| 42 এত্সরের পুত্রদের নাম: বিল্হন, সাবন আর যাকন|দিশনের পুত্রদের নাম: ঊষ আর অরাণ| 43 ইস্রায়েলে রাজতন্ত্র চালু হবার বহু আগে থেকেই ইদোমে রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল| নীচে ইদোমের রাজাদের পরিচয় দেওয়া হল:ইদোমের প্রথম রাজা ছিলেন বিয়োরের পুত্র বেলা| বেলার রাজধানীর নাম ছিল দিন্হাবা| 44 বেলার মৃত্যুর পর বস্রার সেরহের পুত্র য়োব্ব নতুন রাজা হলেন| 45 য়োববের মৃত্যুর পর রাজা হলেন তৈমন দেশের হূশম| 46 হূশম মারা গেলে তাঁর জায়গায় বদদের পুত্র হদদ নতুন রাজা হলেন| তাঁর রাজধানীর নাম ছিল অবীত্| তিনি মোয়াবীয়দের দেশে মিদিযনকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন| 47 হদদের মৃত্যুর পর মস্রেকার বাসিন্দা সম্ল তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন| 48 সম্ল মারা গেলে ফরাত্ নদীর তীরবর্তী রহোবোতের শৌল নতুন রাজা হলেন| 49 শৌল মারা গেলে রাজা হলেন অক্বোরের পুত্র বাল্-হানন| 50 বাল্-হাননের মৃত্যুর পর রাজা হলেন হদদ| তাঁর রাজধানীর নাম ছিল পায় আর তাঁর স্ত্রীর নাম মহেটবেল| মহেটবেল ছিলেন মট্রেদের কন্যা, মেষাহবের দৌহিত্রী| 51 তারপর হদদের মৃত্যু হল|তিম্ন অলিয়া, য়িথেত্, 52 অহলীবামা, এলা, পীনোন, 53কনস, তৈমন, মিব্সর, 54মগ্দীযেল, ঈরম প্রমুখ ব্যক্তিরা ছিলেন ইদোমের নেতা| 53 54
1 ইস্রায়েলের পুত্রদের নাম: রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর, সবূলূন, 2 দান, য়োষেফ, বিন্যামীন, নপ্তালি, গাদ ও আশের| 3 যিহূদার পুত্রদের নাম: এর, ওনন এবং শেলা| এঁরা তিনজন কনানীয়া বত্-শূয়ার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন| প্রভু যখন দেখলেন য়ে, যিহূদার প্রথম পুত্র, এর অসত্, তখন তিনি তাঁকে হত্যা করলেন| 4 যিহূদার পুত্রবধূ তামর ও যিহূদার মিলনের ফলে পেরস ও সেরহর জন্ম হয়| অর্থাত্ সব মিলিয়ে যিহূদার সন্তান সংখ্যা ছিল পাঁচ| 5 পেরসের পুত্রদের নাম: হিষ্রোণ আর হামূল| 6 সেরহের পাঁচ পুত্রের নাম: শিম্রি, এথন, হেমন, কল্কোল আর দারা| 7 শিম্রির পুত্রের নাম কর্মি| কর্মির পুত্রের নাম ছিল আখর| যুদ্ধে লাভ করা জিনিসপত্র ঈশ্বরকে না দিয়ে নিজের কাছে রেখে আখর ইস্রায়েলকে বহুতর সমস্যার মধ্যে ঠেলে দিয়েছিলেন| 8 এথনের পুত্রের নাম অসরিয়| 9 হিষ্রোণের পুত্রদের নাম: য়িরহমেল, রাম আর কালুবায়| 10 রাম ছিলেন যিহূদার লোকদের নেতা নহশোনের পিতামহ এবং অম্মীনাদবের পিতা| 11 নহশোনের পুত্রের নাম সল্মোন, সল্মোনের পুত্রের নাম বোয়স, 12 বোয়সের পুত্রের নাম ওবেদ, ওবেদের পুত্রের নাম যিশয়, যিশয়ের ছিল সাত পুত্র| 13 যিশয়ের বড় ছেলের নাম ইলীয়েব, দ্বিতীয় পুত্রের নাম অবীদানব, তৃতীয় পুত্রের নাম শম্ম, 14 চতুর্থ পুত্রের নাম নথনেল, পঞ্চম পুত্রের নাম রদ্দয়, 15 ষষ্ঠ পুত্রের নাম ওত্সম আর সপ্তম পুত্রের নাম ছিল দায়ূদ| 16 এদের দুই বোনের নাম সরূয়া ও অবীগল| সরূয়ার তিন পুত্র- অবীশয়, য়োয়াব ও অসাহেল| 17 অবীগলের পুত্রের নাম অমাসা আর তাঁর পিতা য়েথর ছিলেন ইশ্মায়েলের বাসিন্দা| 18 হিষ্রোণের পুত্রের নাম ছিল কালেব| কালেব আর তাঁর স্ত্রী, যিরিয়োতের কন্যা অসূবার মিলনের ফলে য়েশর, শোব্ব ও অর্দোন এই তিন পুত্রের জন্ম হয়| 19 অসূবার মৃত্যু হলে কালেব ইফ্রাথাকে বিয়ে করলেন| কালেব আর ইফ্রাথার পুত্রের নাম হূর| 20 হূরের পুত্রের নাম ঊরি আর পৌত্রের নাম বত্সলেল ছিল| 21 হিষ্রোণ 60 বছর বয়সে গিলিয়দের পিতা মাখীরের কন্যাকে বিয়ে করেন| তাঁর ও মাখীরের কন্যার মিলনে সগূবের জন্ম হয়| 22 সগূবের পুত্রের নাম ছিল যায়ীর| গিলিয়দ দেশে যায়ীরের 23টি শহর ছিল| 23 কিন্তু কনাত্ ও আশপাশের 60টি শহরতলী সহ যায়ীরের সমস্ত গ্রাম গেশূর এবং অরাম কেড়ে নিয়েছিল| ঐ 60 খানা ছোট শহরতলীর মালিক ছিলেন গিলিয়দের পিতা মাখীরের ছেলেপুলেরা| 24 ইফ্রাথার কালেব শহরে, হিষ্রোণের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী অবিয়া অস্হূর নামে এক পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন| অস্হূরের পুত্রের নাম ছিল তকোযা| 25 হিষ্রোণের বড় ছেলে যিরহমেলের পুত্রদের নাম ছিল: রাম, বূনা, ওরণ, ওত্সম আর অহিয়| রাম য়িরহমেলের বড় ছেলে| 26 অটারা নামে যিরহমেলের আরেকজন স্ত্রী ছিল| তাঁর পুত্রের নাম ওনম| 27 যিরহমেলের বড় ছেলে রামের পুত্রদের নাম ছিল: মাষ, যামীন আর একর| 28 ওনমের শম্ময় ও যাদা নামে দুই পুত্র ছিল| শম্ময়ের দুই পুত্রের নাম ছিল নাদব ও অবীশূর| 29 অবীশূর আর তাঁর স্ত্রী অবীহযিলের অহবান আর মোলীদ নামে দুই পুত্র ছিল| 30 নাদবের পুত্রদের নাম: সেলদ ও অপপযিম| সেলদ অপুত্রক অবস্থায় মারা যান| 31 অপপযিমের পুত্রের নাম য়িশী| য়িশী ছিলেন শেশনের পিতা আর অহলয়ের পিতামহ| 32 শম্ময়ের ভাই, যাদার পুত্রদের নাম য়েথর ও য়োনাথন| য়েথর অপুত্রক অবস্থাতেই মারা গিয়েছিলেন| 33 য়োনাথনের দুই পুত্রের নাম পেলত্ ও সাসা| এই হল যিরহমেলের সন্তান-সন্ততিদের তালিকা| 34 শেশনের কোন পুত্র ছিল না| তবে তাঁর এক কন্যা ছিল, যাকে তিনি মিশর থেকে আনা যার্হা নামে 35 এক ভৃত্যের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন| এই যার্হা আর তাঁর কন্যার অত্তয় নামে এক পুত্র ছিল| 36 অত্তয়ের পুত্রের নাম নাথন, নাথনের পুত্রের নাম সাবদ, 37 সাবদ ছিল ইফ্ললের পিতা| ইফ্লল ছিল ওবেদের পিতা| 38 ওবেদের পুত্রের নাম য়েহূ, য়েহূর পুত্রের নাম অসরিয়, 39 অসরিয়র পুত্রের নাম হেলস, হেলসের পুত্রের নাম ইলীয়াসা, 40 ইলীয়াসার পুত্রের নাম সিস্ময়, সিস্ময়ের পুত্রের নাম শল্লুম, 41 শল্লুমের পুত্রের নাম যিকমিয়, আর যিকমিয়র পুত্রের নাম ছিল ইলীশামা| 42 য়িরহমেলের ভাই কালেবের পুত্রদের নাম ছিল মেশা ও মারেশা| মেশার পুত্রের নাম সীফ আর মারেশার পুত্রের নাম হিব্রোণ| 43 হিব্রোণের পুত্রদের নাম ছিল: কোরহ, তপূহ, রেকম ও শেমা| 44 শেমার পুত্রের নাম রহম| রহমের পুত্রের নাম ছিল য়র্কিযম| রেকমের পুত্রের নাম ছিল শম্ময়| 45 শম্ময়ের পুত্রের নাম মায়োন আর মায়োনের পুত্র ছিল বৈত্-সুর| 46 কালেবের দাসী ও উপপত্নী ঐফার পুত্রদের নাম ছিল: হারণ, মোত্সা ও গাসেস| হারণের পুত্রের নামও গাসেস| 47 য়েহদয়ের পুত্রদের নাম- রেগম, য়োথম, গেসন, পেলট, ঐফা ও শাফ| 48 কালেবের আরেক দাসী ও উপপত্নী মাখার পুত্রদের নাম ছিল শেবর আর তির্হন: 49 এছাড়াও মাখার শাফ ও শিবা নামে দুই পুত্র ছিল| শাফের পুত্রের নাম মদ্মন্না আর শিবার পুত্রদের নাম ছিল মক্বেনার ও গিবিয়া| কালেবের কন্যার নাম ছিল অক্ষা| 50 “কালেবের উত্তরপুরুষ নিম্নরূপ: হূর ছিলেন কালেবের বড় ছেলে| তাঁর মা ছিলেন ইফ্রাথা| হূরের পুত্রদের নাম শোবল, শল্মা ও হারেফ| এঁরা তিন জন যথাএমে কিরিযত্-যিয়ারীম, বৈত্লেহম আর বৈত্-গাদ শহরের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন| 51 52 কিরিযত্ যিয়ারীমের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শোবল| শোবলের উত্তরপুরুষরা ছিল হারোয়া, মনূহোতের অর্ধেক লোকরা| 53 কিরিযত্-যিয়ারীমের পরিবারগোষ্ঠী হল যিত্রীয়, পূথীয়, শূমাথীয় ও মিশ্রাযীযরা| আবার সরাথীয ও ইষ্টায়োলীযরা মিশ্রাযীযদের থেকে উদ্ভ্ূত হয়| 54 বৈত্লেহম, নটোফা, অট্রোত্-বেত্-য়োয়াব, মনহতের অর্ধেক লোকরা, সরাযীযরা 55 এবং যাবেশে য়ে সব লেখকদের পরিবারগুলি বাস করত তারা হল: তিরিযাথ, শিমিযথ আর সূখাথ| তারা সকলেই কীনীয গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত এবং বেত্-রেখবের প্রতিষ্ঠাতা হম্মতের বংশধর ছিলেন|
1 দায়ূদের কয়েকটি পুত্রের জন্ম হয়েছিল হিব্রোণ শহরে| তাঁর পুত্রদের তালিকা নিম্নরূপ:দায়ূদের প্রথম পুত্রের নাম অথোন| তাঁর মা ছিলেন য়িষ্রিযেলের অহীনোযম|দায়ূদের দ্বিতীয় পুত্র দানিয়েলের মা ছিলেন যিহূদার কর্মিলের অবীগল| 2 দায়ূদের তৃতীয় পুত্র অবশালোমের মা গশূররাজ তল্মযের কন্যা মাখা|চতুর্থ পুত্র আদোনিয়র মায়ের নাম ছিল হগীত| 3 পঞ্চম পুত্র, শফটিয়র মায়ের নাম ছিল অবীটল|ষষ্ঠ পুত্র যিত্রিয়মের মায়ের নাম ছিল ইগ্ল্লা, দায়ূদের স্ত্রী| 4 হিব্রোনে তাঁর এই ছয় পুত্রের জন্ম হয়| মহারাজ দায়ূদ হিব্রোণে সাত বছর ছয় মাস রাজত্ব করেছিলেন| আর তিনি জেরুশালেমে মোট 33 বছর রাজত্ব করেন| 5 জেরুশালেমে তাঁর য়ে সমস্ত পুত্র জন্মগ্রহণ করে তারা হল:অম্মীয়েলের কন্যা বত্সেবার গর্ভে শিমিয়, শোব্ব, নাথন এবং শলোমন প্রমুখ চার পুত্র| 6 এছাড়া য়িভর, ইলীশূয়া, ইলীফেলট, নোগহ, নেফগ, যাফিয়, ইলীশামা, ইলীয়াদা ও ইলীফেলট নামে দায়ূদের আরো নয় পুত্র ছিল| 7 8 9 উপপত্নীদের সঙ্গে মিলনের ফলেও দায়ূদের বেশ কয়েকটি সন্তান হয়| আর তামর নামে তাঁর একটা কন্যাও ছিল| 10 শলোমনের পুত্রের নাম রহবিয়াম, রহবিয়ামের পুত্রের নাম অবিয়, অবিয়র পুত্রের নাম আসা, আসার পুত্রের নাম য়িহোশাফট, 11 যিহোশাফটের পুত্রের নাম ছিল য়োরাম, য়োরামের পুত্রের নাম অহসিয়, অহসিয়র পুত্রের নাম য়োয়াশ, 12 যোয়াশের পুত্রের নাম অমত্সিয়, অমত্সিয়র পুত্রের নাম অসরিয়, অসরিয়র পুত্রের নাম য়োথম, 13 য়োথমের পুত্রের নাম আহস, আহসের পুত্রের নাম হিষ্কিয়, হিষ্কিয়র পুত্রের নাম মনঃশি, 14 মনঃশির পুত্রের নাম আমোন আর আমোনের পুত্রের নাম য়োশিয়| 15 5য়োশিয়র বংশধরদের তালিকা নিম্নরূপ: তাঁর প্রথম পুত্রের নাম য়োহানন, দ্বিতীয় পুত্রের নাম য়িহোযাকীম, তৃতীয় পুত্রের নাম সিদিকিয, চতুর্থ পুত্রের নাম শল্লুম| 16 য়িহোযাকীমের পুত্রদের নাম ছিল য়িকনিয আর সিদিকিয| 17 য়িকনিয বাবিলে বন্দী হবার পর তাঁর পুত্রদের তালিকা নিম্নরূপ: শল্টীযেল, 18 মল্কীরাম, পদায, শিনত্সর, য়িকমিয, হোশামা ও নদবিয| 19 পদাযের পুত্রদের নাম সরুব্বাবিল আর শিমিযি| মশুল্লম আর হনানিয হল সরুব্বাবিলের দুই পুত্র; তাঁদের শলোমীত্ নামে এক বোনও ছিল| 20 হশুবা, ওহেল, বেরিখিয়, হসদিয, যুশব-হেষদ নামে সরুব্বাবিলের আরো পাঁচজন পুত্র ছিল| 21 হনানিযর পুত্রের নাম পলটিয| পলটিযর পুত্রের নাম য়িশাযাহ| য়িশাযাহর পুত্রের নাম রফায, রফাযের পুত্রের নাম অর্ণন, অর্ণনের পুত্রের নাম ওবদিয আর ওবদিযর পুত্রের নাম শখনিয| 22 শখনিযর পুত্র শময়িয়; এবং শময়িয়ের পুত্র হটূশ, য়িগাল, বারীহ, নিযরিয আর শাফট মোট ছয় জন| 23 ইলীযৈনয়, হিষ্কিয় আর অস্রীকাম নামে নিযরিযর তিনটি পুত্র ছিল| 24 আর ইলীযৈনযের হোদবিয, ইলীয়াশীব, পলাযঃ অক্কুব, য়োহানন, দলায আর অনানি নামে সাত পুত্র ছিল|
1 যিহূদার পাঁচ পুত্রের নাম পেরস, হিষ্রোণ, কর্মী, হূর আর শোবল| 2 শোবলের পুত্রের নাম রাযা, রাযার পুত্রের নাম য়হত্ আর য়হতের দুই পুত্রের নাম ছিল অহূময ও লহদ| সরাথীযরা অহূময ও লহদের উত্তরপুরুষ ছিল| 3 ঐটমের পুত্রদের নাম: য়িষ্রিযেল, য়িশ্ামা ও য়িদ্বশ| এদের বোনের নাম ছিল হত্সলিল-পোনী| 4 পনূযেলের পুত্রের নাম ছিল গাদোর| এসর ছিল হূশের পিতা|এরা ছিল হূরের পুত্র| হূর ছিল ইফ্রাথার প্রথম পুত্র| ইফ্রাথা ছিলেন বৈত্লেহমের প্রতিষ্ঠাতা| 5 তকোযের পিতা অস্হূরের হিলা ও নারা নামে দুই স্ত্রী ছিল| 6 নারা ও অস্হূরের পুত্রদের নাম: অহুষম, হেফর, তৈমিনি ও অহষ্টরি| 7 হিলা আর অস্হূরের পুত্রদের নাম: সেরত্, য়িত্সোহর, ইত্নন আর কোস| 8 কোসের দুই পুত্রের নাম ছিল আনূব আর সোব্বো| কোস হারুমের পুত্র অহর্হলের পরিবারের পূর্বপুরুষ ছিলেন| 9 যাবেশের জন্ম তার অন্যান্য ভাইদের জন্মের থেকে বেশী বেদনাদাযক ছিল| যাবেশের মা বলেছিলেন, “ও হবার সময় আমায় খুব কষ্ট পেতে হয়েছিল বলে আমি ওর এই নাম রেখেছি!” 10 যাবেশ ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বলেন, “আমি আপনার প্রকৃত আশীর্বাদ প্রার্থনা করি| আমি চাই আপনি আমাকে আরো জমি-জমা দিন| সব সময় আমার কাছাকাছি থেকে যারা আমাকে আঘাত করতে চায় তাদের থেকে আমায় রক্ষা করুন, তাহলে আর আমায় কোন কষ্ট ভোগ করতে হবে না|” ঈশ্বর তাঁর এসমস্ত মনোবাসনা পূর্ণ করেছিলেন| 11 শূহের ভাই কলূবের পুত্রের নাম ছিল মহীর| মহীরের পুত্রের নাম ইষ্টোন, 12 ইষ্টোনের পুত্রদের নাম বৈত্রাফা, পাসেহ ও তহিন্ন| তহিন্নর পুত্রের নাম ঈরনাহস| এঁরা সকলেই রেকার বাসিন্দা ছিলেন| 13 কনসের দুই পুত্রের নাম: অত্নীয়েল আর সরায| অত্নীয়েলের দুই পুত্রের নাম: হথত্ আর মিযোনোথয| 14 মিযোনোথযের পুত্রের নাম ছিল অফ্রা|সরায়ের পুত্রের নাম ছিল য়োয়াব| এই য়োয়াব ছিলেন কুশলী শিল্পী গে হারাসিমদের পূর্বপুরুষ| 15 য়িফুন্নির পুত্র ছিল কালেব| কালেবের পুত্রদের নাম: ঈরূ, এলা ও নয়ম| এলার পুত্রের নাম ছিল কনস| 16 য়িহলিলেলের পুত্রদের নাম: সীফ, সীফা, তীরিয আর অসারেল| 17 ইষ্রার পুত্রদের নাম: য়েথর, মেরদ, এফর আর যালোন| মেরদের এক পক্ষের স্ত্রীর গর্ভে জন্মায় মরিযম, শম্ময ও য়িশ্বহ| য়িশ্বহ ছিল ইষ্টিমোযর পিতা| মেরদের মিশরীয স্ত্রী ফরৌণের কন্যা বিথিযার গর্ভে য়েরদ গদোরের পিতা, হেবর সোখোর পিতা, আর য়িকুথীযেল সানোহর পিতা জন্মগ্রহণ করেন| এই তিন জনের পুত্রদের নাম ছিল যথাএমে গদোর, সোখোর ও সানোহ| 18 19 মেরদের স্ত্রী ছিলেন যিহূদার বাসিন্দা এবং নহমের বোন| তাঁর পৌত্রদের নাম কিযীলা আর ইষ্টিমোয| কিযীলা আর ইষ্টিমোয যথাএমে র্গম্মীয ও মাখাথীযদের পূর্বপুরুষ| 20 শীমোনের পুত্রদের নাম ছিল অথোন, রিণ্ন, বিন্-হানন আর তীলোন|য়িশীর দুই পুত্রের নাম সোহেত্ আর বিন্-সোহেত্| 21 শেলা ছিলেন যিহূদার সন্তান| তাঁর পুত্রদের নাম এর, লাদা আর য়োকীম| কোষেবার লোকরাও তাঁরই বংশধর| এছাড়াও য়োযাশ আর সারফ নামে তাঁর দুই পুত্র মোয়াবীয় মেযেদের বিয়ে করে বৈত্লেহমে চলে গিয়েছিলেন| এরের পুত্রের নাম ছিল লেকার| লাদা ছিলেন মারেশার পিতা এবং বৈত্ অসবেযের তাঁতিদের পরিবারগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা| এই পরিবার সম্পর্কে যা কিছু তথ্য় পাওয়া গিয়েছে তা খুবই প্রাচীন| 22 23 শেলার বংশধররা মাটির জিনিষপত্র বানাতেন| এঁরা নতাযীম ও গদেরায বাস করতেন ও সেখানকার রাজাদের জন্য কাজ করতেন| 24 শিমিযোনের পুত্রদের নাম নমূযেল, যামীন, যারীব, সেরহ আর শৌল| 25 শৌলের পুত্রের নাম শল্লুম, শল্লুমের পুত্রের নাম মিব্সম আর মিব্সমের পুত্রের নাম ছিল মিশ্ম| 26 মিশ্মের পুত্রের নাম হম্মুযেল, হম্মুযেলের পুত্রের নাম শক্কূর আর শক্কূরের পুত্রের নাম ছিল শিমযি| 27 শিমযির ষোল জন পুত্র আর ছয় কন্যা ছিল| কিন্তু শিমযির ভাইদের খুব বেশি পুত্রকন্যা ছিল না| যিহূদার অন্যদের তুলনায় তাদের পরিবারগোষ্ঠী য়থেষ্ট ছোট ছিল| 28 শিমযির উত্তরপুরুষরা বের্-শেবা, হত্সর-শূযাল, মোলাদা শহরতলীসমূহে বাস করত| 29 বিল্হা, এত্সম, তোলদ, 30 বথূযেল, র্হম্মা, সিক্লগ, 31 বৈত্-মর্কাবোত্, হত্সর-সূষীম, বৈত্-বিরী, শারযিম প্রমুখ শহরগুলোয দায়ূদের রাজত্ব কালের আগে পর্য়ন্ত বাস করতেন| 32 এই সব শহরগুলোর কাছে য়ে পাঁচটি গ্রাম ছিল, সেগুলি হল: ঐটম, ঐন, রিম্মোণ, তোখেন ও আশন| 33 বালত্ পর্য়ন্ত আরো অনেক গ্রাম ছিল যেখানে শিমযির বংশধররা থাকতেন| তাঁরা তাঁদের পারিবারিক ইতিহাসও লিখে গিয়েছেন| 34 মশোব্ব, য়ম্লেক, অমত্সিযের পুত্র য়োশঃ, য়োয়েল, য়োশিবিযর পুত্র য়েহূ, সরায়ের পুত্র য়োশিবিয, অসীযেলের পুত্র সরায, ইলিযৈনয়, যাকোবা, য়িশোহায, অসায, অদীযেল, য়িশীমীযেল, বনায়, অলোনের পৌত্র ও শিফির পুত্র সীষঃ প্রমুখ ছিলেন এই সব পরিবারগোষ্ঠীর প্রধান ও নেতা| আলোন ছিলেন য়িদযিযর পুত্র এবং শিম্রির নাতি| আবার শিম্রি ছিলেন শময়িয়ের পুত্র|এই লোকদের পরিবার অতিশয় বৃদ্ধি পেল| 35 36 37 38 39 তারা তাদের মেষ ও গবাদি পশুর জন্য চারণভূমির খোঁজে উপত্যকার পূর্বদিকে গদোরের বহিরাঞ্চলে চলে গেল| 40 এভাবে খুঁজতে খুঁজতে তারা উর্বর সবুজ ও শান্তিপূর্ণ জমি খুঁজে পেলো| হামের উত্তরপুরুষরা অতীতে সেখানে বসবাস করতেন| 41 রাজা হিষ্কিয়র যিহূদায় রাজত্ব কালে এই ঘটনা ঘটেছিল| এই সমস্ত লোক গদোরে এসেছিল, হামীযদের তাঁবুগুলি ধ্বংস করেছিল, তারা মিযূনীযদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের ধ্বংস করেছিল| আজ অবধি তাদের একজনও বেঁচে নেই| অতঃপর তারা সেখানে থাকতে শুরু করল কারণ ওখানকার জমিতে তাদের মেষের খাবার মত প্রচুর পরিমাণে ঘাস ছিল| 42 শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠীর পাঁচশো লোক সেযীর পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস করতে গিয়েছিলেন| পলটিয, নিযরিয, রফাযিয ও উষীযেল প্রমুখ য়িশীর পুত্ররা এই দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| শিমিযোনের বংশধররাও এখানকার বাসিন্দা অমালেকীযদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল এবং 43 যারা বেঁচ্ছেিল সেই সমস্ত অমালেকীযদের তারা মেরে ফেলেছিল| তারপর থেকে আজ অবধি সেই শিমিযোনীযরা সেযীরেই বাস করছেন|
1 রূবেণ ছিলেন ইস্রায়েলের প্রথম সন্তান| তাই, প্রথামত তাঁরই বড় ছেলের বিশেষ সম্মান ও সুবিধে পাবার কথা| কিন্তু য়েহেতু রূবেণ তাঁর পিতার স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন সেই কারণে বড় ছেলের অধিকার য়োষেফের পুত্ররা পেয়েছিলেন| পারিবারিক ইতিহাসেও, রূবেণের নাম বড় ছেলের হিসেবে নথিভুক্ত করা নেই| যিহূদা য়েহেতু তাঁর ভাইদের থেকে বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন, সেহেতু তাঁর পরিবার থেকেই নেতা স্থির করা হত| তা সত্ত্বেও, বড় ছেলের বিশেষ অধিকার ও অন্যান্য ক্ষমতা য়োষেফের বংশের লোকরাই ভোগ করতেন| রূবেণের পুত্ররা ছিল হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্মী| 2 3 4 য়োয়েলের উত্তরপুরুষদের তালিকা নিম্নরূপ: য়োয়েলের পুত্রের নাম শিমযিয, শিমযিযর পুত্রের নাম গোগ, গোগের পুত্রের নাম শিমিযি, 5 শিমিযির পুত্রের নাম মীখা, মীখার পুত্রের নাম রাযা, রাযার পুত্রের নাম বাল, 6 বালের পুত্রের নাম ছিল বেরা| অশূররাজ তিগ্লত্-পিলেষর রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর এই নেতাকে তার জায়গা ছাড়তে বাধ্য করেন এবং তাঁকে নির্বাসন দেন| 7 য়োয়েলের ভাইদের ও তাঁর পরিবারের পরিচয় তাঁর পরিবারগোষ্ঠীর ইতিহাস অনুযায়ীছিল নিম্নরূপ: এই বংশের বড় ছেলে ছিলেন যিয়ীয়েল, তারপর সখরিয় আর 8 আসসের পুত্র বেলা| আসস ছিলেন শেমার পুত্র| শেমা ছিলেন য়োয়েলের পুত্র| এঁরা অরোযের থেকে নবো এবং বাল্-মিযোন পর্য়ন্ত অঞ্চলে বাস করতেন| 9 পূর্বদিকে ফরাত্ নদীর কাছে মরুভূমি পর্য়ন্ত অঞ্চলে এঁদের বসবাস ছিল| বসবাসের জন্য তাঁরা এই অঞ্চল বেছে নিয়েছিলেন কারণ তাঁদের গিলিয়দে অনেক গবাদি পশু ছিল| 10 শৌলের রাজত্ব কালে, বেলার লোকরা হাগরীযদের সঙ্গে যুদ্ধ করে, তাঁদের হারিয়ে তাঁদের তাঁবুতে বসবাস করতে শুরু করেন এবং গিলিয়দের পূর্বপ্রান্ত পর্য়ন্ত অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেন| 11 গাদের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের কাছেই বাশন অঞ্চলের শহর সলখা পর্য়ন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করতেন| 12 বাশনের প্রথম নেতা ছিলেন য়োয়েল| তারপরে যথাএমে শাফম ও যানয় নেতা হন| 13 মীখায়েল, মশুল্লম, শেবা, য়োরায, যাকন, সীয আর এবর হলেন এই পরিবারের সাত ভাই| 14 এঁরা সকলেই হূরির পুত্র অবীহযিলের উত্তরপুরুষ| আবার হূরি ছিলেন যারোহর পুত্র, যারোহ গিলিয়দের পুত্র, গিলিয়দ মীখায়েলের পুত্র, মীখায়েল য়িশীশযের পুত্র, য়িশীশয় য়হদোর পুত্র আর য়হদো ছিলেন বূষের পুত্র| 15 অন্য এক পরিবারের নেতা অহির পিতার নাম অব্দিয়েল| তিনি ছিলেন গূনির পুত্র| 16 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা গিলিয়দ অঞ্চলে বসবাস করত| এঁরা বাশন ও বাশনের পার্শ্ববর্তী ছোট খাটো শহর থেকে সীমান্তে শারোণ পর্য়ন্ত সমস্ত সমভূমিতে বসতি স্থাপন করেছিলেন| 17 এই সমস্ত নামগুলি গাদের পারিবারিক ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করা হয় এবং এগুলি যিহূদার রাজা য়োথম ও ইস্রায়েলের রাজা যারবিযামের সময়ে নথিভুক্ত করা হয়| 18 রূবেণ, গাদ ও অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী থেকে 44,760 জন সাহসী লোক ছিল| ঢাল-তরোযাল ছাড়াও তীর-ধনুক নিয়ে যুদ্ধ করাতেও তারা ছিল পারদর্শী| 19 এরা হাগরীয, য়িটূর, নাফীশ ও নোদবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে| 20 মনঃশি, রূবেণ ও গাদ পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে যুদ্ধে তাদের সাহায্য করার জন্য প্রার্থনা করেন| ঈশ্বর তাদের সাহায্য করেন কারণ তারা তাঁকে বিশ্বাস করেছিল এবং তারা হাগরীযদের ও অন্যান্য সকলকে যুদ্ধে পরাস্ত করে| 21 তাদের 50,000 উট, 2,50,000 মেষ এবং 2,000 গাধা নিয়ে নেওয়া ছাড়াও তারা 1,00,000 ব্যক্তিকে বন্দী করেছিলেন| 22 ঈশ্বর বয়ং রূবেণের বংশের লোকদের সহায় হওয়ায বহু হাগরীয যুদ্ধে নিহত হন এবং অতঃপর মনঃশি, রূবেণ ও গাদ পরিবারের লোকেরা হাগরীযদের বাসভূমিতে থাকতে শুরু করেন| ইস্রায়েলের লোকরা বন্দী হওয়ার আগে পর্য়ন্ত তাঁরা ওখানেই বাস করেছেন| 23 মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেক লোক বাল্-হর্ম্মোণ, সনীর ও হর্ম্মোণ পর্বত পর্য়ন্ত বাশন অঞ্চলে বসবাস করতেন| এমশঃ তাঁরা একটি বড় গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিলেন| 24 এফর, য়িশী, ইলীযেল, অস্রীযেল, য়িরমিয, হোদবিয, য়হদীযেল প্রমুখ বিখ্যাত সাহসী বীররা ছিলেন এঁদের নেতা| 25 কিন্তু এঁরা তাঁদের পূর্বপুরুষের আরাধ্য ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপাচরণ করে এই অঞ্চলের প্রাক-বাসিন্দাদের ভ্রান্ত দেবদেবীর আরাধনা শুরু করলেন| এ কারণেই ঈশ্বর কিন্তু প্রাক-বাসিন্দাদের ধ্বংস করেছিলেন| 26 ফলতঃ, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, অশূররাজ পূল যিনি তিগ্লত্-পিলেষর নামেও পরিচিত ছিলেন, যুদ্ধ করবার উস্কানি দিলেন এবং তিনি রূবেণ, গাদ ও অর্ধেক মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের বন্দী করে নির্বাসনে নিয়ে গেলেন| এই সমস্ত বন্দীদের পূল হেলহ, হাবোর ও হারা এবং গোষণ নদীর কাছে নিয়ে এলেন| সে দিন থেকে আজ পর্য়ন্ত তারা সেখানেই বসবাস করে আসছেন|
1 লেবির পুত্রদের নাম ছিল: গের্শোন, কহাত্ আর মরারি| 2 কহাতের পুত্রদের নাম ছিল: অম্রাম, য়িষ্হর, হিব্রোণ আর উষীযেল| 3 অম্রামের সন্তানদের নাম ছিল: হারোণ, মোশি আর মরিযম|হারোণের পুত্ররা ছিল নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর এবং ঈথামর| 4 ইলিয়াসরের পুত্রের নাম পীনহস, পীনহসের পুত্রের নাম অবিশূয, 5 অবিশূযর পুত্রের নাম বুক্কি, বুক্কির পুত্রের নাম উষি, 6 উষির পুত্রের নাম সরহিয, সরহিযর পুত্রের নাম মরাযোত্, 7 মরাযোতের পুত্র অমরিয, অমরিযর পুত্রের নাম অহীটূব, 8 অহীটূবের পুত্রের নাম সাদোক, সাদোকের পুত্রের নাম অহীমাস, 9 অহীমাসের পুত্রের নাম অসরিয়, অসরিয়র পুত্রের নাম য়োহানন, 10 য়োহাননের পুত্রের নাম অসরিয়| এই অসরিয় শলোমনের জেরুশালেমে বানানো মন্দিরের যাজক ছিলেন| 11 অসরিয়র পুত্রের নাম অমরিয, অমরিযর পুত্রের নাম অহীটূব, 12 অহীটূবের পুত্রের নাম সাদোক, সাদোকের পুত্রের নাম শল্লুম, 13 শল্লুমের পুত্রের নাম হিল্কিয়, হিল্কিয়র পুত্রের নাম অসরিয়, 14 অসরিয়র পুত্রের নাম সরায আর সরায়ের পুত্রের নাম ছিল যিহোষাদক| 15 প্রভু যখন যিহূদা আর জেরুশালেমের প্রতি রুদ্ধ হয়েছিলেন, যিহোষাদকও তখন বাসভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন| প্রভু নবূখদ্নিত্সরকে দিয়ে এই সময় যিহূদা আর জেরুশালেমের সমস্ত লোকদের বন্দী করিযে ভিন্দেশে পাঠিয়ে ছিলেন| 16 লেবির পুত্ররা ছিল: গের্শোন, কহাত্ আর মরারি| 17 গের্শোনের পুত্রদের নাম ছিল লিব্নি আর শিমিযি| 18 কহাতের পুত্রদের নাম ছিল অম্রাম, য়িষ্হর, হিব্রোণ আর উষীযেল| 19 মরারির দুই পুত্রের নাম মহলি আর মূশি|পিতৃপুরুষদের নামানুসারে লেবীয় পরিবারের তালিকা নিম্নরূপ: 20 গের্শোনের উত্তরপুরুষ: গের্শোমের পুত্র ছিল লিব্নি, লিব্নির পুত্র য়হত্, য়হতের পুত্র সিম্ম, 21 সিম্মর পুত্র য়োযাহ, য়োযাহের পুত্র ইদ্দো, ইদ্দোর পুত্র সেরহ আর সেরহর পুত্র ছিল য়িযত্রয| 22 কহাতের উত্তরপুরুষ: কহাতের পুত্র ছিল অম্মীনাদব, অম্মীনাদবের পুত্র কোরহ, কোরহের পুত্র অসীর, 23 অসীরের পুত্র ইল্কানা, ইল্কানার পুত্র ইবীযাসফ, ইবীযাসফের পুত্র অসীর, 24 অসীরের পুত্র তহত্, তহতের পুত্র ঊরীযেল, ঊরীযেলের পুত্র ঊষিয আর ঊষিযর পুত্র শৌল| 25 ইল্কানার পুত্রের নাম ছিল অমাসয় আর অহীমোত্| 26 ইল্কানার আরেক পুত্রের নাম ছিল সোফী, তার পুত্রের নাম নহত্, 27 নহতের পুত্রের নাম ইলীয়াব, ইলীয়াবের পুত্রের নাম য়িরোহম, য়িরোহমের পুত্রের নাম ইল্কানা আর ইল্কানার পুত্রের নাম ছিল শমূযেল| 28 শমূযেলের দুই পুত্রের নাম য়োয়েল আর অবিয| য়োয়েল ছিল শমূযেলের বড় ছেলে| 29 মরারির বংশধর: মরারির পুত্রের নাম মহলি, মহলির পুত্রের নাম লিব্নি, লিব্নির পুত্রের নাম শিমিযি, শিমিযির পুত্রের নাম উষঃ, 30 উষেঃর পুত্রের নাম শিমিয, শিমিযর পুত্রের নাম হগিয আর হগিযর পুত্রের নাম ছিল অসায| 31 সাক্ষ্যসিন্দুক রাখার সিন্দুকটি প্রভুর গৃহতে রাখার পর মহারাজ দায়ূদ নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের সেখানকার ভজন ও কীর্তনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন| 32 শলোমন প্রভুর জন্য জেরুশালেমে মন্দির বানানোর আগে পর্য়ন্ত এই সমস্ত গায়করা এই পবিত্র তাঁবু বা সমাগম তাঁবুতে তাঁদের কর্মসূচী অনুযায়ীগান-বাজনা আরাধনা করতেন| 33 এঁরা হলেন কহাতের পরিবারের:য়োয়েলের পুত্র গায়ক হেমন, য়োয়েলের পিতা শমূযেল, 34 শমূযেলের পিতা ইল্কানা, ইল্কানার পিতা য়িরোহম, য়িরোহমের পিতা ইলীযেল, ইলীযেলের পিতা তোহ, 35 তোহর পিতা সূফ, সূফের পিতা ইল্কানা, ইল্কানার পিতা মাহত, মাহতের পিতা অমাসয়, 36 অমাসযের পিতা ইল্কানা, ইল্কানার পিতা য়োয়েল, য়োয়েলের পিতা অসরিয়, অসরিয়র পিতা সফনিয়, 37 সফনিয়র পিতা তহত, তহতের পিতা অসীর, অসীরের পিতা ইবীযাসফ, ইবীযাসফের পিতা কোরহ, 38 কোরহর পিতা য়িষ্হর, য়িষ্হরের পিতা কহাত্, কহাতের পিতা লেবি আর লেবির পিতা ছিলেন ইস্রায়েল| 39 আসফ ছিলেন হেমনের আত্মীয় এবং তিনি হেমনের ডানদিকে দাঁড়িয়ে কাজ করতেন| আসফের পিতা ছিলেন বেরিখিয়, বেরিখিয়র পিতা শিমিয, 40 শিমিযর পিতা মীখায়েল, মীখায়েলের পিতা বাসেয, বাসেযর পিতা মল্কিয়, 41 মল্কিয়র পিতা ইত্নির, ইত্নিরের পিতা সেরহ, সেরহের পিতা অদাযা, 42 অদাযার পিতা এথন, এথনের পিতা সিম্ম, সিম্মর পিতা শিমিযি, 43 শিমিযির পিতা য়হত, য়হতের পিতা গের্শোন আর গের্শোন ছিলেন লেবির পুত্র| 44 মরারির উত্তরপুরুষরা হেমন আর আসফের আত্মীয় ছিলেন এবং তাঁরা হেমনের বাঁদিকে দাঁড়িয়ে গান করতেন| এথন ছিলেন কীশির পুত্র, কীশি অব্দির পুত্র, অব্দি মল্লূকের পুত্র, 45 মল্লূক হশবিযর পুত্র, হশবিয অমত্সিযের পুত্র, অমত্সিয হিল্কিয়র পুত্র, 46 হিল্কিয় অম্সির পুত্র, অম্সি বানির পুত্র, বানি শেমরের পুত্র, 47 শেমর মহলির পুত্র, মহলি মূশির পুত্র, মূশি মরারির পুত্র আর মরারি লেবির পুত্র| 48 হেমন আর আসফের ভাইরাও লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন| লেবির পরিবারগোষ্ঠীকে লেবীয়ও বলা হত|ঈশ্বরের গৃহ, পবিত্র তাঁবুতে কাজ করার জন্যই লেবীয়দের বেছে নেওয়া হয়েছিল| 49 তবে বেদীতে ধুপধূনো দেবার এবং হোমবলি ও বলিদানের অধিকার ছিল শুধুমাত্র হারোণের উত্তরপুরুষদের| প্রভুর গৃহের পবিত্রতম স্থানের সমস্ত কাজ করতেন হারোণের পরিবারের সদস্যরা| ইস্রায়েলের লোকদের প্রায়শ্চিত্ত করাবার জন্য য়ে সমস্ত আচার অনুষ্ঠান করা হত সেটিও তাঁরাই করতেন| তাঁরা প্রভুর দাস মোশি প্রদত্ত সমস্ত বিধি ও আইনগুলি মেনে চলতেন| 50 হারোণের পুত্রের নাম ছিল ইলিয়াসর, ইলিয়াসরের পুত্রের নাম ছিল পীনহস, পীনহসের পুত্রের নাম অবীশূয, 51 অবীশূযর পুত্রের নাম বুক্কি, বুক্কির পুত্রের নাম উষি, উষির পুত্রের নাম সরাহিয, 52 সরাহিযর পুত্রের নাম মরাযোত্, মরাযোতের পুত্রের নাম অমরিয, অমরিযর পুত্রের নাম অহীটূব, 53 অহীটূবের পুত্রের নাম সাদোক আর সাদোকের পুত্রের নাম ছিল অহীমাস| 54 হারোণের উত্তরপুরুষরা তাদের য়ে জমি দেওয়া হয়েছিল সেখানে তাঁবু খাটিযে বসবাস করত| লেবীয়দের য়ে জমি দেওয়া হয়েছিল তার প্রথম অংশটি পেয়েছিল কহাত্ পরিবারগুলি| 55 তাঁদের যিহূদার হিব্রোণ ও তার আশেপাশের জমিতে বাস করতে দেওয়া হয়েছিল| 56 হিব্রোণের দূরবর্তী মাঠ-ঘাট ও গ্রামাঞ্চলগুলি য়িফুন্নির পুত্র কালেবকে দেওয়া হয়| 57 হারোণের উত্তরপুরুষদের হিব্রোণ, নিরাপত্তার শহরদেওয়া হয়| লিব্না, য়ত্তীর, ইষ্টিমোয, 58 হিলেন, দবীর, 59 আশন, বৈত্শেমশ প্রমুখ শহর ও তার পার্শ্ববর্তী মাঠগুলি তাঁদের দেওয়া হয়েছিল| 60 বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর সদস্যরা গিবিযোন, গেবা, অনাথোত্, আলেমত্ প্রমুখ শহর ও তার আশেপাশের মাঠগুলি পেয়েছিলেন|কহাতের পরিবারদের তেরোটি শহর দেওয়া হয়| 61 কহাতের উত্তরপুরুষের বাদবাকি সদস্যরা মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকের মধ্যে থেকে দশটি শহর পেয়েছিলেন| 62 গের্শোমের উত্তরপুরুষরা 13টি শহর পেয়েছিল| তারা শহরগুলি ইষাখর পরিবার, আশের পরিবার, নপ্তালি পরিবার, বাশনে বসবাসকারী মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর একাংশের কাছ থেকে পেয়েছিল| 63 মরারির উত্তরপুরুষরা, রূবেণ, গাদ আর সবূলূন পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে অক্ষ নিক্ষেপ করে 12 খানা শহর পেয়েছিলেন| 64 এই ভাবে ইস্রায়েলীয়রা লেবীয়দের শহর ও জমিজমা ভাগ-বাঁটোযারা করে দিলেন| 65 এই সমস্ত শহরই যিহূদা, শিমিযোন ও বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর ছিল| তাঁরাই অক্ষ নিক্ষেপ করে কোন লেবীয় পরিবার কোন শহর পাবেন তা ঠিক করেছিলেন| 66 ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী কহাত্ পরিবারের কিছু লোককে কয়েকটি শহরতলী দিলেন| ঘুঁটি চেলে এই শহরতলীসমূহ নির্বাচিত হয়েছিল| 67 নিরাপত্তার শহর শিখিম তাদের দেওয়া হয়েছিল| এছাড়াও তাদের দেওয়া হয়েছিল গেষর নগর| 68 য়ক্মিযাম, বৈত্-হোরণ, 69 আইজালন এবং গাত্-রিম্মোণ শহরগুলি| এই শহরগুলির সঙ্গে তারা ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের মাঠগুলিও পেয়েছিল| 70 এবং কহাতের বাকি পরিবারগুলিকে ইস্রায়েলীয়রা মনঃশি পরিবারের অর্ধেকের কাছ থেকে দিল আনের, বিল্যম এবং তাদের মাঠগুলি| 71 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকের কাছ থেকে গের্শোন পরিবারের সদস্যরা বাশনের গোলন শহর ও অষ্টারোত্ এবং তার আশেপাশের মাঠগুলো বসবাসের জন্য পেলেন| 72 এছাড়াও তাঁরা ইষাখর পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে কেদশ, দাবরত্, রামোত্ ও গন্নিম প্রমুখ শহর ও তার সংলগ্ন মাঠগুলো পেলেন| 73 74 আশের পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে তাঁরা পেলেন মশাল, আব্দোন, হূকোক, রহোব প্রমুখ শহর ও তার সংলগ্ন মাঠগুলো| 75 76 নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে তাঁরা পেলেন গালীলের কেদশ, হম্মোন, কিরিযাথযিম প্রমুখ শহর ও তার সংলগ্ন মাঠগুলো| 77 লেবীয়দের বাদবাকিরা ছিলেন মরারি পরিবারের সদস্য| তারা সবূলূন পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে য়খনিয়ম, করতহ, রিম্মোণো এবং তাবোর প্রমুখ শহর ও তার নিকটবর্তী মাঠগুলো পেলেন| 78 মরারি পরিবারের সদস্যরা এছাড়াও মরু অঞ্চলের বেত্সর নগর, যাহসা, কদমোত্, মেফাত্ প্রমুখ শহর ও তার আশেপাশের মাঠগুলো রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে পেলেন| রূবেণের উত্তরপুরুষরা যর্দন নদী ও য়িরিহো শহরের পূর্বপ্রান্তে বসবাস করতেন| 79 80 মরারি পরিবারের সদস্যরা গাদ পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে পেয়েছিলেন গিলিয়দের রামোত্, মহনযিম, হিষ্বোণ, যাসের প্রমুখ শহরের নিকটবর্তী মাঠগুলো| 81
1 ইষাখরের চার পুত্রের নাম ছিল তোলয়, পূয়, যাশূব আর শিম্রোণ| 2 তোলয়ের পুত্ররা সকলেই তাদের পরিবারের নেতা ছিলেন| এদের নাম: উষি, রফায়, যিরীয়েল, যহময়, য়িব্সম আর শমূযেল| এঁরা এবং এঁদের উত্তরপুরুষদের সকলেই ছিলেন বীর সৈনিক| দায়ূদের রাজত্বের সময় এদের পরিবারে 22,600 সৈনিক ছিল| 3 উষির পুত্রের নাম ছিল যিষ্রাহিয়| যিষ্রাহিয়ের পুত্ররা ছিল: মীখায়েল, ওবদিয়, য়োয়েল ও যিশিয়| এঁরা পাঁচজনই ছিলেন তাঁদের পরিবারের নেতা| 4 তাঁদের বংশতালিকা থেকে জানতে পারা যায়, এই পরিবারে 36,000 সৈনিক ছিলেন| বহু বিবাহের কারণে এদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা য়থেষ্ট বেশি ছিল| 5 পারিবারিক ইতিহাস অনুযায়ীইষাখরের পরিবারগোষ্ঠীতে সব মিলিয়ে 87,000 বীর সৈনিক জন্মেছিলেন| 6 বেলা, বেখর ও য়িদীযেল নামে বিন্যামীনের তিন পুত্র ছিল| 7 ইষ্বোণ, উষি, উষীযেল, য়িরেমোত্ আর ঈরী নামে বেলার পাঁচ পুত্র ছিল| এদের পারিবারিক ইতিহাস অনুযায়ীএই পরিবারের মোট 22,034 জন সৈনিক ছিলেন| 8 বেখরের পুত্রেরা ছিল সমীরাঃ য়োযাশ, ইলীযেষর, ইলিযো-ঐনয়, অম্রি, য়িরেমোত্, অবিয, অনাথোত্ আর আলেমত্| তারা সকলেই বেখরের সন্তান| 9 20,200 জন বীর সৈনিক যাঁরা তাঁদের পরিবারের নেতা ছিলেন, তাঁদের নাম পারিবারিক ইতিহাসে তাঁদের পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে নথিবদ্ধ আছে| 10 য়িদীযেলের পুত্রের নাম বিল্হন| বিল্হনের পুত্রদের নাম ছিল: য়িযূশ, বিন্যামীন, এহূদ, কনানা, সেথন, তর্শীশ আর অহীশহর| 11 য়িদীযেলের পুত্ররা সকলেই তাদের পরিবারের নেতা ছিলেন এবং এই বংশে মোট সৈনিকের সংখ্যা ছিল 17,200 জন| 12 শুপপীম আর হুপপীম দুজনেই ছিলেন ঈরের উত্তরপুরুষ| অহেরের পুত্রের নাম ছিল হূশীম| 13 নপ্তালির পুত্রদের নাম ছিল য়হসিযেল, গূনি, য়েত্সর আর শল্লূম|আর এরা সকলেই বিল্হারের উত্তরপুরুষ ছিলেন| 14 মনঃশির পরিবারের ব্বিরণ নিম্নরূপ:মনঃশির অরামীয়া উপপত্নীর অস্রীযেল নামে এক পুত্র ছিল| তাঁর গর্ভে গিলিয়দের পিতা মাখীরেরও জন্ম হয়| 15 মাখীর হুপপীম আর শুপপীমের পরিবারের এক জনকে বিয়ে করেছিলেন| মাখীরের বোনের নাম দেওয়া হয়েছিল মাখা| দ্বিতীয় পুত্রের নাম সলফাদ| তার শুধু কয়েকটি কন্যা সন্তান ছিল| 16 মাখীরের স্ত্রী মাখা একটি পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন এবং তার নাম রেখেছিলেন পেরশ| পেরশের ভাইযের নাম ছিল শেরশ| শেরশের পুত্রদের নাম ছিল ঊলম ও রেকম| 17 ঊলমের পুত্রের নাম বদান| গিলিয়দের উত্তরপুরুষ নিম্নরূপ: গিলিয়দ ছিলেন মাখীরের পুত্র, মাখীর মনঃশির পুত্র| 18 মাখীরের বোন হম্মোলেকতের পুত্র ছিল ঈশ্হোদ, অবীযেষর আর মহলা| 19 শমীদার পুত্রদের নাম ছিল অহিযন, শেখম, লিক্হি ও অনীযাম| 20 ইফ্রয়িমের উত্তরপুরুষ নিম্নরূপ: ইফ্রয়িমের পুত্রের নাম ছিল শূথেলহ, শূথেলহের পুত্র বেরদ, বেরদের পুত্র তহত্, 21 তহতের পুত্র ইলিয়াদা, ইলিয়াদার পুত্র তহত্, তহতের পুত্র সাবদ আর সাবদের পুত্রের নাম ছিল শূথেলহ| গাত শহরের কিছু বাসিন্দা এত্সর ও ইলিযদকে হত্যা করে কারণ তাঁরা দুজন এই শহর থেকে গবাদি পশু আর মেষ চুরি করার চেষ্টা করেছিলেন| 22 এদের দুজনের পিতা ইফ্রয়িম পুত্রদের মৃত্যুশোকে অনেকদিন কান্নাকাটি করেছিলেন| তারপর তাঁর পরিবারের লোকরা এসে তাঁকে সান্ত্বনা দিলে 23 তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে আবার মিলিত হলেন এবং তাঁর স্ত্রীর গর্ভে একটি পুত্র জন্মালে ইফ্রয়িম সেই পুত্রের নাম দিলেন বরীয,কারণ এই পরিবারে একটি দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছিল| 24 ইফ্রয়িমের কন্যার নাম ছিল শীরা| তিনি উর্দ্ধ ও নিম্ন বৈত্-হোরোণ এবং উষেণ শীরা পত্তন করেছিলেন| 25 ইফ্রয়িমের আরেক পুত্রের নাম ছিল রেফহ| রেফহের পুত্রের নাম রেশফ, রেশফের পুত্রের নাম তেলহ, তেলহের পুত্রের নাম তহন, 26 তহনের পুত্রের নাম লাদন, লাদনের পুত্রের নাম অম্মীহূদ, অম্মীহূদের পুত্রের নাম ইলীশামা, 27 ইলীশামার পুত্রের নাম নূন আর নূনের পুত্রের নাম ছিল য়িহোশূয| 28 ইফ্রয়িমের উত্তরপুরুষরা বৈথেল ও তার আশেপাশের গ্রামগুলোয, পূর্বদিকে নারণ, পশ্চিমে গেষর ও তার চারপাশের শহরে, শিখিম এবং এর আশেপাশের গ্রামগুলিতে আযা এবং এর গ্রামগুলির অঞ্চলে পর্য়ন্ত বাস করত| 29 মনঃশিদের জমির সীমান্ত বরাবর ছিল বৈত্শান, তানক, মগিদ্দো, দোর এবং তাদের গ্রামগুলি| ইস্রায়েলের পুত্র য়োষেফের উত্তরপুরুষরা এই সমস্ত শহরে থাকতেন| 30 আশেরের পুত্রদের নাম ছিল য়িম্ন য়িশ্বাঃ, য়িশ্বী আর বরীয| এদের বোনের নাম সেরহ| 31 বরীযর পুত্রদের নাম হেবর আর মল্কীযেল| মল্কীযেলের পুত্রের নাম বির্ষোত| 32 হেবরের পুত্রদের নাম য়ফ্লেট, শোমের আর হোথম| এঁদের বোনের নাম শূযা| 33 য়ফ্লেটের পুত্রদের নাম ছিল: পাসক, বিম্হল আর অশ্বত্| 34 শেমরের পুত্রদের নাম ছিল: অহি, রোগহ, য়িহুব্ব আর অরাম| 35 শেমরের ভাই হেলমের পুত্রদের নাম ছিল: শোফহ, য়িম্ন শেলশ আর আমল| 36 সোফহর পুত্রদের নাম: সূহ, হর্ণেফর, শূযাল, বেরী, য়িম্র, 37 বেত্সর, হোদ, শম্ম, শিল্শ, য়িত্রণ আর বেরা| 38 য়েথরের পুত্রদের নাম: য়িফুন্নি, পিস্প আর অরা| 39 উল্লেব পুত্রদের নাম: আরহ, হন্নীযেল আর রিত্সিয| 40 আশেরের এই সমস্ত উত্তরপুরুষরা ছিলেন বীর যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের নেতা এবং শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি| এঁদের পরিবারের মোট যোদ্ধার সংখ্যা ছিল 26,000 জন|
1 বিন্যামীনের প্রথম পুত্র বেলা, দ্বিতীয় পুত্র অস্বেল, তৃতীয় পুত্র অহর্হ, চতুর্থ পুত্র নোহা আর পঞ্চম পুত্র রাফা| 2 3 বেলার পুত্রদের নাম: অদ্দর, গেরা, অবীহূদ, অবীশূয, নামান, আহোহ, গেরা, শফূফন আর হূরম| 4 5 6 নামান, অহিয আর গেরা ছিলেন এহুদের উত্তরপুরুষ| এঁরা সকলেই গেবায নিজেদের পরিবারের নেতা ছিলেন| উষঃ ও অহীহূদের পিতা গেরা এঁদের বাড়ি ছেড়ে মানহতে উঠে য়েতে বাধ্য করেছিলেন| 7 8 শহরযিম মোযাব অঞ্চলে তাঁর স্ত্রী হূশীম ও বারাক উভয়কেই বিদায দিয়ে আর একটি বিবাহ করেন এবং সেই বিবাহের ফলস্বরূপ কয়েকটি সন্তান হয়| 9 স্ত্রী হোদশের মাধ্যমে য়োব্ব, সিবিয, মেশা, মল্কম, য়িযূশ, শখিয আর মির্ম নামে তাঁর সাত পুত্র হয়| এঁরাও সকলে নিজেদের পরিবারের নেতা ছিলেন| 10 11 শহরযিম আর তাঁর স্ত্রী হূশীমেরও অহীটূব আর ইল্পাল নামে দুই পুত্র ছিল| 12 ইল্পালের পুত্রদের নাম ছিল এবর, মিশিযম, শেমদ, বরীয আর শেমা| শেমদ, ওনো এবং লোদের শহরগুলি ও তার পার্শ্ববর্তী নগরগুলি গড়ে তুলেছিলেন| বরীয আর শেমা অযালোনে বসবাসকারী পরিবারগুলোর নেতা ছিলেন এবং গাতে যাঁরা বাস করতেন তাঁদের তাঁরা উঠে য়েতে বাধ্য করেছিলেন| 13 14 বরীযর পুত্রদের নাম ছিল শাশক, য়িরেমোত্, 15 সবদিয়, অরাদ, এদর, 16 মীখায়েল, য়িশ্পা আর য়োহ| 17 ইল্পালের পুত্রদের নাম সবদিয়, মশুল্লম, হিষ্কি, হেবর, 18 য়িশ্ামরয, য়িষ্লিয আর য়োব্ব| 19 শিমিযির পুত্রদের নাম ছিল যাকীম, সিখ্রি, সব্দি, 20 ইলীযৈনয়, সিল্লথয, ইলীযেল, 21 অদাযা, বরাযা আর শিম্রত্| 22 শাশকের পুত্রদের নাম ছিল: য়িশ্পন, এবর, ইলীযেল, 23 অব্দোন, সিখ্রি, হানন, 24 হনানিয, এলম, অন্তোথিয, 25 য়িফদিয আর পনূযেল| 26 য়িরোহমের পুত্রদের নাম শিম্শরয, শহরিয, অথলিয, 27 যারিশিয, এলিয আর সিখ্রি| 28 এঁরা সকলেই জেরুশালেমে বাস করতেন এবং নিজেদের পরিবারের নেতা ছিলেন| একথা এঁদের পারিবারিক ইতিহাসে লেখা আছে| 29 যিয়ীয়েল ছিলেন গিবিয়োনের পিতা| তিনি গিবিয়োনে থাকতেন| তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল মাখা| 30 য়িযীযেলের পুত্রদের নাম হল জ্যেষ্ঠ অব্দোন এবং তারপর যথাএমে সূর, কীশ, বাল, নের, নাদব, 31 গদোর, অহিযো, সখর আর মিক্লোত| 32 মিক্লোতের পুত্রের নাম শিমিয| এঁরা সকলে জেরুশালেমে তাঁদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছাকাছি বাস করতেন| 33 নেরেরপুত্রের নাম ছিল কীশ| কীশের পুত্র ছিল শৌল আর শৌলের পুত্রদের নাম ছিল: য়োনাথন, মল্কীশূয, অবীনাদব ও ইশ্বাল| 34 য়োনাথনের পুত্রের নাম: মরীব্-বাল আর মরীব্-বালের পুত্রের নাম ছিল মীখা| 35 মীখার পুত্রদের নাম ছিল: পিথোন, মেলক, তরেয আর আহস| 36 আহসের পুত্রের নাম যিহোয়াদা, যিহোয়াদার পুত্রদের নাম আলেমত্, অস্মাবত্ আর সিম্রি| সিম্রির পুত্রের নাম মোত্সা, 37 মোত্সার পুত্রের নাম ছিল বিনিয়া, বিনিয়ার পুত্রের নাম রফায়, রফায়ের পুত্র ছিল ইলীয়াসা আর ইলীয়াসার পুত্র ছিল আতসেল| 38 আত্সেলের ছয় পুত্রের নাম: অস্রীকাম, বোখরূ, ইশ্মায়েল, শিযরিয, ওবদিয আর হানান| 39 আত্সেলের ভাই এশকের পুত্রদের নাম ছিল: জ্যেষ্ঠ ঊলম, দ্বিতীয় য়িযূশ আর তৃতীয় পুত্র এলীফেলট| 40 ঊলমের পুত্ররা সকলেই ছিল বীর সৈনিক, তীর ধনুক চালাতে পারদর্শী| এদের সকলেরই অনেক অনেক পুত্র ও পৌত্র ছিল| সব মিলিয়ে মোট 150 জন পুত্র ও পৌত্র ছিল|এঁরা সকলেই বিন্যামীনের উত্তরপুরুষ|
1 ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দাদের নাম তাদের পারিবারিক ইতিহাসে লিপিবদ্ধ ছিল| সেই সমস্ত পারিবারিক ইতিহাস সঙ্কলিত করে ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থটি লেখা হয়| 2 পরবর্তীকালে নিজেদের বাসস্থানে প্রথম যাঁরা ফিরে এসে আবার বাস করতে শুরু করেন তাঁদের মধ্যে যাজকবর্গ, লেবীয়, মন্দিরের দাস ছাড়াও কিছু ইস্রায়েলীয় ব্যক্তি ছিলেন| 3 জেরুশালেমে বসবাসকারী যিহূদা, বিন্যামীন, ইফ্রয়িম আর মনঃশি পরিবার গোষ্ঠীর লোকদের তালিকা নিম্নরূপ: 4 উথযের পিতা অম্মীহূদ, অম্মীহূদের পিতা অম্রি, অম্রির পিতা ইম্রি, ইম্রির পিতা বানি, যিনি ছিলেন যিহূদার সন্তান খোদ পেরসের উত্তরপুরুষ| 5 শীলোনীযদের মধ্যে জেরুশালেমে থাকতেন অসায আর তাঁর পুত্ররা| 6 সেরহদের মধ্যে যুযেল ও তাঁর আত্মীয়-স্বজন সহ মোট 690 জন থাকতেন| 7 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর যাঁরা জেরুশালেমে থাকতেন তাঁরা হলেন: সল্লূর পিতা মশুল্লম, মশুল্লমের পিতা হোদবিয, হোদবিযর পিতা হস্নূয, 8 য়িরোহমের পুত্র ছিল য়িব্নিয, এলা ছিল উষির পুত্র, উষি ছিল মিখ্রির পুত্র, মশুল্লম ছিল শফটিয়র পুত্র, শফটিয় ছিল রূযেলের পুত্র এবং রূযেল ছিল য়িব্নিযর পুত্র| 9 বিন্যামীনদের পারিবারিক ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই পরিবারের মোট 956 জন জেরুশালেমে বাস করতেন এবং এঁরা সকলেই নিজেদের পারিবারিক নেতা ছিলেন| 10 যাজকদের মধ্যে জেরুশালেমে বাস করতেন য়িদযিয, য়িহোযারীব, যাখীন এবং হিল্কিয়র পুত্র অশূরীয়| 11 হিল্কিয় ছিলেন মশুল্লমের পুত্র, তাঁর পিতা ছিলেন সাদোক| সাদোকের পিতা মরাযোত, তাঁর পিতা অহীটূব| অহীটূব ঈশ্বরের মন্দিরের এক জন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী ছিলেন| 12 এঁরা ছাড়াও বাস করতেন: অদাযার পিতা য়িরোহম, তাঁর পিতা পশ্হূর, তাঁর পিতা মল্কিয়, আর অদীযেলের পুত্র মাসয, অদীযেলের পিতা য়হসেরা, তাঁর পিতা মশুল্লুম, তাঁর পিতা মশিল্লমীত ও মশিল্লমীতের পিতা ইম্মের প্রমুখ| 13 সব মিলিয়ে যাজকদের সংখ্যা ছিল 1,760 জন| এঁরা সকলে ঈশ্বরের মন্দিরে সেবার জন্য নিযুক্ত ও নিজেদের পরিবারের নেতা ছিলেন| 14 লেবীয় পরিবারের মধ্যে যাঁরা জেরুশালেমে বাস করতেন তাঁদের তালিকা নিম্নরূপ: শময়িয়র পিতা হশূব, তাঁর পিতা অস্রীকাম, তাঁর পিতা মরারির উত্তরপুরুষ হশবিয| 15 এছাড়াও জেরুশালেমে থাকতেন বকবকর, হেরশ, গালল আর মত্তনিয়| মত্তনিয় ছিলেন মীখার পুত্র, মীখা সিখ্রির পুত্র, সিখ্রি আসফের পুত্র| 16 ওবদিয ছিলেন শময়িয়র পুত্র, শময়িয় গাললের পুত্র, গালল য়িদূথূনের পুত্র, য়িদূথূন বেরিখিয়র পুত্র, বেরিখিয় আসার পুত্র আর আসা ছিল ইল্কানার পুত্র| বেরিখিয় নটোফার লোকদের কাছাকাছি ছোট শহরগুলোয বসবাস করতেন| 17 দ্বাররক্ষীদের মধ্যে জেরুশালেমে বাস করতেন শল্লুম, অক্কুব, টল্মোন, অহীমান এবং তাঁদের আত্মীয়রা| শল্লুম ছিলেন এঁদের নেতা| 18 এঁরা ছিলেন লেবি পরিবারগোষ্ঠীর সদস্য এবং পূর্বদিকে রাজদ্বারের পাশে দাঁড়াতেন| 19 শল্লুম ছিলেন কোরির পুত্র, কোরি ইবীযাসফের পুত্র, ইবীযাসফ কোরহের পুত্র ছিলেন| শল্লুম এবং তাঁর ভাইরা ছিলেন কোরহ পরিবারের সদস্য এবং তাঁদের পূর্বপুরুষদের মতোই তাঁরাও পবিত্র তাঁবুর দরজায পাহারা দিতেন| 20 অতীতে ইলিয়াসরের পুত্র পীনহস মন্দিরের দ্বার রক্ষীদের তত্ত্বাবধান করতেন| প্রভু তাঁর সহায় ছিলেন| 21 মশেলেমিযর পুত্র সখরিয়ও পবিত্র তাঁবুর দ্বাররক্ষীর কাজ করতেন| 22 সব মিলিয়ে 212 জন ব্যক্তি পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ পথগুলো পাহারা দিতেন| এদের সকলের নামই তাদের পারিবারিক ইতিহাসে লেখা আছে| এঁরা সকলে বিশ্বাসী ছিলেন বলেই ভাব্বাদী দায়ূদ ও শমূযেল তাঁদের ও 23 তাঁদের উত্তরপুরুষদের প্রভুর গৃহ ও পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ পথ পাহারার কাজে নিযুক্ত করেছিলেন| 24 উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম সব মিলিয়ে মোট চারটি প্রবেশ-পথ ছিল| 25 প্রায়ই দ্বাররক্ষীদের আত্মীয়রা তাদের ছোট ছোট শহরতলী থেকে এসে এঁদের 7 দিনের জন্য সাহায্য করতেন| 26 লেবীয় পরিবারের চারজন এই সমস্ত দ্বাররক্ষীদের নেতা ছিলেন| এঁদের সকলেরই কাজ ছিল ঈশ্বরের মন্দিরের ঘর-দোরের যত্ন নেওয়া ও মন্দিরের ধনসম্পদ রক্ষা করা| 27 সারা রাত ধরে তাঁরা মন্দির পাহারা দিতেন এবং তারপর সকালে ঈশ্বরের মন্দিরের দরজা খুলে দিতেন| 28 কিছু দ্বার রক্ষীদের কাজ ছিল মন্দিরের নিত্য ব্যবহৃত থালার হিসেব রাখা| এঁরা এই সমস্ত থালা বাইরে আনা ও নিয়ে যাওয়ার সময়ে গুনে রাখতেন| 29 কিছু দ্বার রক্ষী আসবাবপত্র, বিশেষ বিশেষ কাজে ব্যবহৃত থালা ছাড়াও মযদা, দ্রাক্ষারস, তেল, ধুপধূনো ও বিশেষ তেলেরতুদেখাশোনা করত| 30 কিন্তু যাজকরাই ব্যবহৃত সুগন্ধী তেলের দেখাশোনা করতেন| 31 কোরহ পরিবারের শল্লুমের বড় ছেলে মত্তিথিয় নামে জনৈক লেবীয় হোমের জন্য ব্যবহৃত রুটি সেঁকার দায়িত্বে ছিলেন| 32 কোরহ পরিবারের কিছু দ্বার রক্ষীর কাজ ছিল বিশ্রামের দিনে য়ে সমস্ত রুটি টেবিলে পরিবেশন করা হত সেগুলি প্রস্তুত করা| 33 য়ে সমস্ত লেবীয়রা গান গাইতেন এবং তাঁদের পরিবারের নেতা ছিলেন তাঁরা মন্দিরের ভেতরে ঘরে বাস করতেন| সেহেতু তাঁদের সারা দিন সারা রাত মন্দিরের কাজ করতে হত য়েহেতু তাঁদেরকে অন্য কোন কাজ করতে হত না| 34 পারিবারিক ইতিহাসে জেরুশালেমে বসবাসকারী এই সমস্ত লেবীয়দের তাঁদের পরিবারের নেতা হিসেবে উল্লেখ করা আছে| 35 গিবিয়োনের পিতা যিয়ীয়েল গিবিয়োনে বাস করতেন| তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল মাখা| 36 তাঁদের পুত্রদের নাম যথাএমে অব্দোন, সূর, কীশ, বাল, নের, নাদব, 37 গাদোর, অহিযো, সখরিয় ও মিক্লোত্| 38 মিক্লোতের পুত্র ছিল শিমিযাম| য়িযীযেলের পরিবারের সকলেই তাঁদের আত্মীয়দের কাছাকাছি জেরুশালেমে বাস করতেন| 39 নেরের পুত্রের নাম ছিল কীশ, কীশের পুত্রের নাম শৌল, আর শৌলের পুত্রদের নাম ছিল য়োনাথন, মল্কীশূয, অবীনাদব ও ইশ্বাল| 40 য়োনাথনের পুত্রের নাম ছিল মরিব্-বাল আর পৌত্রের নাম মীখা| 41 মীখার পুত্রদের নাম ছিল পিথোন, মেলক, তহরেয আর আহস| 42 আহসের পুত্র ছিল যারঃ যারের পুত্ররা ছিল আলেমত্, অস্মাবত্ এবং সিম্রি| সিম্রি ছিল মোত্সার পিতা| 43 মোত্সার পুত্রের নাম বিনিযা, বিনিয়ার পুত্রের নাম রফায, রফাযের পুত্রের নাম ছিল ইলীয়াসা আর ইলীয়াসার পুত্রের নাম আত্সেল| 44 আত্সেলের ছয় পুত্রের নাম ছিল অস্রীকাম, বোখরূ, ইশ্মায়েল, শিযরিয, ওবদিয আর হানান|
1 পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলীয় লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এলে ইস্রায়েলীয়রা পালিয়ে গিয়েছিল| গিল্বোয পাহাড়ে মারাও গিয়েছিল অনেকে| 2 পলেষ্টীয়রা রাজা শৌল ও তাঁর পুত্রদের পেছনে ধাওযা করে শেষ পর্য়ন্ত তাঁদের ধরে ফেলে হত্যাও করেছিল| শৌলের তিন পুত্র য়োনাথন, অবীনাদব ও মল্কি-শূয পলেষ্টীয়দের হাতে মারা পড়েছিলেন| 3 এবং শৌলের চারপাশে যুদ্ধ তীব্র হয়ে ওঠে এবং শৌলকে পলেষ্টীয় তীরন্দাজরা তীর ছুঁড়ে আহত করে| 4 রাজা শৌল তখন তাঁর অস্ত্রবাহককে বললেন, “তুমি তরবারি বের করে নিজের হাতে আমায় হত্যা কর| তাহলে আর এই ভিন্দেশীরা এসে আমায় নিয়ে মস্করা করতে বা আমায় আঘাত করতে পারবে না|”কিন্তু রাজার অস্ত্রবাহক মহারাজকে হত্যা করতে ভয় পেল| তাই শৌল তখন নিজের তরবারি দিয়েই আত্মহত্যা করলেন| 5 অস্ত্রবাহক যখন দেখতে পেল রাজা শৌলের মৃত্যু হয়েছে তখন সেও নিজের তরবারি দিয়ে নিজেকে হত্যা করল| 6 অর্থাত্ রাজা শৌল ও তাঁর তিন পুত্র এক সঙ্গে মারা গেলেন| 7 সমতল ভূমিতে বসবাসকারী ইস্রায়েলের বাসিন্দারা দেখল তাদের সেনাবাহিনী রণক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়েছে আর রাজা শৌল ও তাঁর তিন পুত্র মারা গিয়েছে| তখন তারাও তাদের শহর ছেড়ে পালাল| পলেষ্টীয়রা সেই সমস্ত শহর দখল করে সেখানে বাস করতে শুরু করল| 8 পরের দিন পলেষ্টীয়রা মৃতদেহ থেকে দামী জিনিসপত্র খুলে নিতে এসে গিল্বোয পর্বতে রাজা শৌল ও তাঁর তিন পুত্রের মৃতদেহ খুঁজে পেল| 9 শৌলের দেহ থেকে দুর্মূল্য জিনিসপত্র নিয়ে নেওয়ার পর পলেষ্টীয়রা শৌলের মুণ্ড এবং বর্ম নিয়ে নিল এবং তাদের লোকদের এবং তাদের দেবতাদের খবরটা জানানোর জন্য রাজ্যের সর্বত্র বার্তাবাহক পাঠাল| 10 তারপর তাদের ভ্রান্ত দেবতার মন্দিরে শৌলের কাটা মুণ্ডুটা ঝুলিয়ে দিল| 11 যাবেশ-গিলিয়দের সমস্ত লোকরা যখন জানতে পারল পলেষ্টীয়রা শৌলের কি দশা করেছে 12 তখন তারা শহরের সাহসী লোকদের রাজা ও রাজপুত্রদের মৃতদেহ ফেরত আনতে পাঠাল| যাবেশ-গিলিয়দে রাজা ও রাজপুত্রদের মৃতদেহ নিয়ে আসার পর তারা চার জনকেই যাবেশে একটা বড় গাছের তলায় সমাধিস্থ করে সাত দিন ধরে শোকপ্রকাশ এবং উপোস করল| 13 প্রভুর প্রতি অনুগত না হওয়ার কারণেই এবং প্রভুর বাণী উপেক্ষা করার জন্যই শৌলের মৃত্যু হয়েছিল| প্রভুর উপদেশ নেবার পরিবর্তে শৌল এক মাধ্যমের কাছে পরামর্শের জন্য য়েতেন| 14 এসব কারণেই প্রভু রাজা শৌলের মৃত্যু ঘটিযে য়িশযের পুত্র দায়ূদের হাতে রাজ্য় তুলে দিয়েছিলেন|
1 হিব্রোণে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক দায়ূদের কাছে এসে বলল, “আপনার সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক| 2 আগে, রাজা শৌল জীবিত থাকা কালীন আপনি আমাদের যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন| প্রভু বয়ং আপনাকে বলেছিলেন, ‘দায়ূদ, তুমি আমার লোকদের, ইস্রায়েলের লোকদের মেষপালক হবে| এক দিন তুমিই তাদের নেতা হবে|”‘ 3 ইস্রায়েলের সমস্ত নেতারাও হিব্রোণে দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে এলে, তিনি প্রভুর সাক্ষাতে তাঁদের সকলের সঙ্গে সেখানে চুক্তিবদ্ধ হলেন এবং নেতারা সকলে তাঁর গায়ে সুগন্ধী তেল ছিটিয়ে তাঁকে ইস্রায়েলের নতুন রাজা হিসেবে অভিষেক করলেন| শমূযেলের মাধ্যমে প্রভু আগেই একথা ভবিষ্যত্ বাণী করেছিলেন| 4 দায়ূদ এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা তখন জেরুশালেমে গেলেন| সে সময়ে জেরুশালেম শহরের নাম ছিল য়িবূষ| আর সেখানে যাঁরা বাস করত তাদের যিবূষীয় বলা হত| এই সমস্ত যিবূষীয়রা 5 দায়ূদকে তাদের শহরে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করলে, দায়ূদ তাদের যুদ্ধে পরাজিত করে সিযোনের দুর্গ দখল করলেন| এই অঞ্চলটিই পরবর্তী কালে দায়ূদ নগরী বা দায়ূদের শহর নামে পরিচিত হয়| 6 দায়ূদ বললেন, “যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে য়ে আমার সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দেবে তাকেই আমি আমার সেনাবাহিনীর সেনাপতি করব|” তখন সরূযার পুত্র য়োয়াব সেই আক্রমণের নেতৃত্ব দিলেন এবং তাঁকে ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীর সেনাপতি করা হল| 7 দায়ূদ ঐ দুর্গে তাঁর বসতি বিস্তার করে দুর্গের চারপাশে শহর বানিয়ে ছিলেন বলেই এই জায়গার নাম দায়ূদ নগরী হয়েছিল| দায়ূদ মিল্লো থেকে দুর্গের প্রাচীর পর্য়ন্ত অঞ্চলে শহর স্থাপন করেছিলেন| য়োয়াব শহরের অন্যান্য অঞ্চলের সংস্কার সাধন করেছিলেন| 8 9 এদিকে সর্বশক্তিমান প্রভুর সহায়তায উত্তরোত্তর দায়ূদের শক্তিবৃদ্ধি হতে থাকল| 10 ইস্রায়েলে দায়ূদের শাসন কালে তিনজন নেতা ক্ষমতা ও খ্যাতির শিখর স্পর্শ করেছিলেন| এঁরা দায়ূদের বিশিষ্ট সেনাবাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব করতেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের সঙ্গে একত্রিতভাবে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীদায়ূদের রাজ্য়কে সহায়তা করতেন| 11 এই তিন জন ব্যক্তির মধ্যে প্রথম জন হলেন হক্মোনীযের পুত্র যাশবিযাম| তিনি ছিলেন রথ-পরিচালক অধিকর্তাদের নেতা| একবার যাশবিযাম তাঁর বর্শা দিয়ে এক সঙ্গে 300 জনকে হত্যা করেছিলেন| 12 দ্বিতীয় জন হলেন অহোহের দোদোর পুত্র ইলিয়াসর| 13 তিনি পস্-দম্মীমে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধের সময় দায়ূদকে সঙ্গ দিয়েছিলেন| ইস্রায়েলের লোকরা যখন পলেষ্টীয়দের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য পালাতে শুরু করেছিল সে সময় এই তিন জন বিরোধী সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে এক ক্ষেত ভর্তি য়ব রক্ষা করে এবং বিপক্ষীয শএুদের প্রভুর সহায়তায পরাজিত করে| 14 15 এক দিন যখন দায়ূদ অদুল্লমের গুহাতে আটকা পড়েছেন এবং রফাযীম উপত্যকা পর্য়ন্ত পলেষ্টীয় সেনাবাহিনী এগিয়ে এসেছে, সে সময় এই তিন বীর হামাগুড়ি দিয়ে সমস্ত পথটুকু গিয়ে দায়ূদের সঙ্গে য়োগ দিয়েছিলেন| 16 আরেক বার এক দল পলেষ্টীয় সেনা তখন বৈত্লেহমে আর দায়ূদ ছিলেন দুর্গের ভেতরে| 17 নিজের বাসভূমির এক গণ্ডুষ জল পান করার জন্য তৃষ্ণার্ত দায়ূদ কথাপ্রসঙ্গে সবে বলেছেন, “ইস, কেউ যদি এখন আমায় বৈত্লেহমের সিংহদরজার পাশের কুঁযোটা থেকে একটু জল পান করাতে পারত|” দায়ূদ সত্যিকার চাইছিল না, কেবল মাত্র বলছিল| 18 সঙ্গে সঙ্গে এই তিন বীর যোদ্ধা পলেষ্টীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে গিয়ে বৈত্লেহমের য়ে কুঁযোর জল দায়ূদ পান করতে চেয়েছিলেন, সেই জল নিয়ে আসলেন| দায়ূদ তখন সেই জল নিজে পান না করে নৈবেদ্য স্বরূপ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে মাটিতে ঢেলে দিয়ে বললেন, 19 “হে প্রভু, নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে যারা এই জল আমার জন্য এনেছে তা পান করা আর তাদের রুধির পান করা সমতুল্য| তাই দায়ূদ জল পান করতে অস্বীকার করলেন|” দায়ূদের ঐ তিন জন নাযক এই ধরণের আরো অনেক বীরত্বপূর্ণ কাজকর্ম করেছিলেন| 20 য়োয়াবের ভাই অবীশয় ছিলেন এই তিন বীরের নেতা| তিনি একবার বর্শা দিয়ে 300 জনকে হত্যা করেছিলেন| 21 অবীশযের খ্যাতি এদের কারো থেকে কম তো ছিলই না বরঞ্চ সেরা তিরিশ জন সেনার তুলনায়ও দ্বিগুণ ছিল| যদিও তিনি তিন বীরের এক জন ছিলেন না, তবুও তিনি তাদের নেতা হয়েছিলেন| 22 যিহোয়াদার পুত্র বনায় এক জন বীরযোদ্ধা ছিলেন| তিনি কব্সেলের লোক ছিলেন এবং বহু দুঃসাহসিক কাজ করেছিলেন| তিনি মোযাবের দুই সাহসী যোদ্ধাকে হত্যা করা ছাড়াও একবার এক তুষারাচ্ছন্ন দিনে একটা গুহায প্রবেশ করে একটা সিংহ মেরেছিলেন| 23 এছাড়াও বনায়, তাঁতীর দণ্ডের মত সুবিশাল বল্লমধারী 7 1,2 ফুট দীর্ঘ এক মিশরীয সেনাকে মেরে ফেলেছিলেন| বনায়ের ছিল শুধু একটা লাঠি কিন্তু মিশরীযর হাত থেকে তার বল্লমটা কেড়ে নিয়ে তিনি তাই দিয়েই ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করেন| 24 যিহোয়াদার এই বীরপুত্রের খ্যাতি ঐ তিন জন নাযকের তুলনায় কোন অংশে কম ছিল না| 25 এমনকি ঐ তিন জনের একজন না হয়েও তাঁর খ্যাতি সেরা তিরিশ জন সৈনিকের থেকে বেশি ছিল| দায়ূদ তাঁকে তাঁর দেহরক্ষীদের নেতা নিযুক্ত করেছিলেন| 26 য়োয়াবের ভাই অসাহেল, বৈত্লেহমের দোদোর পুত্র ইল্হানন, হরোরের শম্মোত্, পলোনের হেলস, তকোযের ইক্কেশের পুত্র ঈরা, অনাথোতের অবীযেষর, হূশাতীয সিব্বখয, অহোহর ঈলয, নটোফার মহরয, নটোফার বানার পুত্র হেলদ, বিন্যামীন পরিবারের গিবিয়ার রীবয়ের পুত্র ইথয, পিরিযাথোনের বনায়, গাশ-উপত্যকা নিবাসী হূরয, অর্ব্বতীয অবীযেল, বাহরূমের অস্মাবত্, শাল্বোনের ইলিযহবঃ, গিষোণের হাষেমের পুত্র হরারী, শাগির পুত্র য়োনাথন, হরারী সাখরের পুত্র অহীযাম, ঊরের পুত্র ইলীফাল, মখেরাতের হেফর, পলোনার অহিয, কর্মিলের হিষ্রো, ইষ্বয়ের পুত্র নারয, নাথনের ভাই য়োয়েল, হগ্রির পুত্র মিভর, অম্মোনের সেলক, সরূযার পুত্র য়োয়াবের অস্ত্রবাহক বেরোতের নহরয, য়িত্রযের ঈরা আর গারেব, হিত্তীয়ের ঊরিয, অহলযের পুত্র সাবদ, রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান শীষার পুত্র অদীনা ও তাঁর ত্রিশ জন সঙ্গী, মাখার পুত্র হানান, মিত্নর য়োশাফট, অষ্টরোতের উষিয, অরোযেরবের হোথমের দুই পুত্র শাম ও যিয়ীয়েল, শিম্রির পুত্র য়িদীযেল আর তাঁর ভাই তীষীয য়োহা, মহবীর ইলীযেল, ইল্নামের দুই পুত্র য়িরীবয় আর য়োশবিয, মোযাবের য়িত্মা, ইলীযেল, ওবেদ আর মসোবাযের যাসীযেল প্রমুখ সকলেই ছিলেন দায়ূদের ‘সেরা তিরিশ’ সৈন্যদলের সেনা| 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47
1 দায়ূদ যখন কীশের পুত্র শৌলের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন তখন য়ে সমস্ত যোদ্ধারা সিক্লগে তাঁর কাছে এসেছিল এটি হল তাদের তালিকা| তারা দায়ূদকে যুদ্ধে সাহায্য করেছিল| 2 এঁরা য়ে কোন হাতেই তীর ছুঁড়তে পারতো, দু’হাতে গুলতিও চালাতে পারতো| এঁরা সকলেই বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর সদস্য এবং শৌলের আত্মীয় ছিল| 3 অহীযেষর ছিলেন এঁদের দলের নেতা, এছাড়াও এই দলে ছিলেন তাঁর ভাই য়োযাশ (এঁরা গিবিয়াতের শমায়ের পুত্র), অস্মাবতের পুত্র য়িষীযেল আর পেলট, অনাথোত শহরের বরাখা আর য়েহূ, 4 গিবিয়োনের য়িশ্ামযিয (ইনি সেই ত্রিশ জন বীরের অন্যতম এবং তাদের অধ্যক্ষ ছিলেন|), য়িরমিয, য়হসীযেল, য়োহানন, গদেরাথের য়োষাবদ, 5 ইলিযূষয, য়িরীমোত্, বালিয, শমরিয়, হরূফের শফটিয়, 6 ইল্কানা, য়িশিয, অসরেল, য়োয়েষর, যাশবিযাম প্রমুখ কোরহ পরিবারগোষ্ঠীর যোদ্ধারা 7 আর গদোর শহরের য়িরোহমের পুত্র য়োয়েলা আর সবদিয়| 8 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর একাংশও মরুভূমিতে দায়ূদের দুর্গে গিয়ে তাঁর সঙ্গে য়োগ দিয়েছিলেন| এরাও সকলেই সিংহের মত পরাএমশালী এবং কুশলী যোদ্ধা ছিলেন| বর্শা আর ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করা ছাড়াও এঁরা সকলেই পাহাড়ী পথে হরিণের মত দৌড়তে পারতেন| 9 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর এই দলের নেতা ছিলেন এষর; দ্বিতীয় ওবদিয এবং তৃতীয় ইলীয়াব| 10 চতুর্থ মিশ্ামন্না, পঞ্চম য়িরমিয, 11 ষষ্ঠ অত্তয, সপ্তম ইলীযেল, 12 অষ্টম য়োহানন, নবম ইল্সাবাদ, 13 দশম য়িরমিয আর একদশ মগ্বন্নয| 14 এঁরা সকলেই গাদীয সেনাবাহিনীর সেনাপতি ছিলেন এবং এই দলের দুর্বলতম ব্যক্তিও একাই 100 জনের সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখতেন| দলের সর্বাপেক্ষা যিনি শক্তিমান ছিলেন তিনি একা 1,000 জনের মোকাবিলা করতে পারতেন| 15 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর এই সমস্ত সৈনিকরা বছরের প্রথম মাসে, যখন যর্দন নদীতে প্রবল বন্যা হচ্ছে সে সময়ে নদী পার হয়ে উপত্যকার লোকদের পূর্ব ও পশ্চিমে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন| 16 বিন্যামীন ও যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর অন্যান্য ব্যক্তিরাও দুর্গে এসে দায়ূদের সঙ্গে য়োগ দিয়েছিলেন| 17 দায়ূদ তাঁদের সঙ্গে দেখা করে বললেন, “আপনারা যদি শান্তিতে আমাকে সাহায্য করতে এসে থাকেন তাহলে আমি আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি| কিন্তু আমি কিছু অন্যায় না করা সত্ত্বেও আপনারা যদি আমার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করতে এসে থাকেন তাহলে আমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর য়েন তা দেখেন এবং আপনাদের শাস্তি দেন|” 18 অমাসয় ছিলেন সেই তিরিশ জন বীরের নেতা| তখন আত্মার ভর হলে তিনি বলে উঠলেন:“দায়ূদ আমরা তোমার পক্ষে| আমরা তোমার সঙ্গে আছি| হে য়িশযের পুত্র- শান্তি! তোমার শান্তি হোক| এবং যারা তোমায় সাহায্য করে তাদের শান্তি হোক| কারণ তোমার ঈশ্বর তোমায় সাহায্য করেন|”দায়ূদ তখন এই সমস্ত ব্যক্তিকেই তাঁর দলে স্বাগত জানিয়ে, তাঁদের ওপর নিজের সেনাবাহিনীর দায়িত্ব দিলেন| 19 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অনেকেই দায়ূদ যখন পলেষ্টীয়দের সঙ্গে শৌলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে য়োগ দিয়েছিলেন| তবে পলেষ্টীয় নেতাদের আপত্তি থাকায় শেষ পর্য়ন্ত দায়ূদ শৌলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পলেষ্টীয়দের সাহায্য করেন নি| এই সমস্ত পলেষ্টীয় নেতারা বলেছিল, “দায়ূদ যদি তাঁর মনিব, শৌলের কাছে ফিরে যান তবে আমাদের মুণ্ড কাটা পড়বে|” 20 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর য়ে সমস্ত ব্যক্তি সিক্লগ শহরে এসে দায়ূদের দলে য়োগ দিয়েছিলেন, তাঁরা হলেন- অদ্ন, য়োষাবদ, য়িদীযেল, মীখায়েল, য়োষাবদ, ইলীহূ আর সিল্লথয| এঁরা সকলেই মনঃশি পরিবারে সৈন্যাধ্যক্ষ ছিলেন| 21 অসত্ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাঁরা দায়ূদকে সাহায্য করেছিলেন| এই সমস্ত অসত্ ব্যক্তিরা সারা দেশে সুয়োগ সুবিধে মত চুরি-চামারি চালিযে যাচ্ছিল| মনঃশি পরিবারের বীর যোদ্ধারা দায়ূদের সেনাবাহিনীর নেতায পরিণত হয়েছিলেন| 22 প্রতি দিন দলে দলে লোক এসে দায়ূদের পাশে দাঁড়ানোয এমশঃ তিনি এক সুবিশাল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুললেন| 23 এই সব ব্যক্তিবর্গ যাঁরা হিব্রোণ শহরে দায়ূদের সঙ্গে য়োগ দিয়েছিলেন এবং যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং প্রভু যা বলেছিলেন সেই অনুযায়ীশৌলের রাজধানী দায়ূদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন, তাঁরা সংখ্যায় হলেন নিম্নরূপ: 24 যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর 6,800 জন কুশলী ও তত্পর যোদ্ধা| এঁরা সকলেই বর্শা ও বল্লমধারী ছিলেন| 25 শিমিযোনের পরিবারগোষ্ঠীর 7,100 জন বীর যোদ্ধা ছিলেন| 26 লেবি পরিবারগোষ্ঠীর 4,600 জন| 27 হারোণ বংশের নেতা যিহোয়াদাও 3,700 জন নিয়ে এই দলে য়োগ দিয়েছিলেন| 28 এছাড়া পরিবারের আরো 22 জন নেতাসহ য়োগ দিয়েছিলেন সাহসী ও তরুণ সেনা সাদোক| 29 শৌলের আত্মীয় এবং তখনও পর্য়ন্ত তার প্রতি অনুগত বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর 3,000 জনও য়োগ দিয়েছিলেন এই দলে| 30 ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 20,800 জন বীরযোদ্ধা| তারা তাদের পরিবারে বিখ্যাত ছিল| 31 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 18,000 জন দায়ূদকে রাজা বানাতে| 32 ইষাখরের পরিবার থেকে আত্মীয়সহ এসেছিলেন 200 জন প্রাজ্ঞ নেতা| তাঁরা হলেন সেই সব লোক যাঁরা ইস্রায়েলের মঙ্গলের জন্য কখন কি করা প্রয়োজন তা ভাল ভাবেই বুঝতেন| 33 সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে য়োগ দিয়েছিলেন সর্বাস্ত্রে পারদর্শী 50,000 জন কুশলী যোদ্ধা| এঁরা সকলেই দায়ূদের একান্ত অনুগত ছিলেন| 34 নপ্তালির পরিবারগোষ্ঠী থেকে 1,000 অধ্যক্ষ ছিল| তাদের সঙ্গে 37,000 ব্যক্তি ছিল| তারা বর্শা ও ঢাল নিয়ে এসেছিলেন| 35 দান পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 28,600 জন রণ-কুশলী যোদ্ধা| 36 আশের পরিবারগোষ্ঠী থেকেও রণ-কুশলী 40,000 জন এসেছিলেন| 37 এবং যর্দন নদীর পূর্বদিক থেকে রূবেণ, গাদ ও অর্ধেক মনঃশি পরিবার মিলিয়ে মোট 1,20,000 ব্যক্তি বিভিন্ন রকমের অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে এই দলে য়োগ দিয়েছিলেন| 38 এই সমস্ত বীর যোদ্ধারা দায়ূদকে ইস্রায়েলের রাজা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে হিব্রোণে এসেছিলেন| ইস্রায়েলের অবশিষ্ট লোকদেরও এই প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন ছিল| 39 এঁরা সকলে হিব্রোণে দায়ূদের সঙ্গে তিন দিন পানাহার করে ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনের বানানো খাবার-দাবার খেয়ে কাটালেন| 40 ইষাখর, সবূলূন ও নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীরা উট, ঘোড়া, গাধা ও ষাঁড়ের পিঠে চড়িযে মযদা, ডুমুরের পিঠে, কিস্মিস্, দ্রাক্ষারস, তেল, ছাগল এবং মেষ প্রভৃতি এনেছিলেন| ইস্রায়েলের সকলেই খুব খুশী হয়েছিলেন|
1 দায়ূদ তাঁর সেনাবাহিনীর সমস্ত অধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলার পর 2 ইস্রায়েলের লোকদের এক জায়গায় জড়ো করে বললেন, “প্রভুর যদি ইচ্ছে হয় এবং তোমরা সকলেও যদি তাই মনে কর, তাহলে ইস্রায়েলের সর্বত্র আমাদের সহ-নাগরিক ও জ্ঞাতিদের, যাজক ও লেবীয়দের সবাইকে, যাঁরা বিভিন্ন শহরে ও তার আশেপাশে আমাদের জ্ঞাতিদের সঙ্গে বাস করেন, তাঁদের খবর পাঠিয়ে আমাদের সঙ্গে য়োগ দিতে বলা হোক| 3 তারপর আমরা সাক্ষ্যসিন্দুকটা জেরুশালেমে আমাদের কাছে ফিরিযে আনি| শৌল রাজা থাকাকালীন আমরা ঐ সাক্ষ্যসিন্দুকটার ব্যাপারে কোন খোঁজ খবর নিতে পারিনি|” 4 দায়ূদের সঙ্গে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা এক মত হল এবং তারা সকলে ভাবল এটিই আমাদের করা উচিত্| 5 কিরিযত্-য়িযারীম থেকে সাক্ষ্যসিন্দুক ফিরিযে আনার জন্য মিশরে সীহোর নদী থেকে লেবো হমাত শহর পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের সকলকে জড়ো করলেন| 6 তারপর দায়ূদ ও এই সমস্ত লোকরা মিলে যিহূদার বালা (অর্থাত্ কিরিযত্-য়িযারীমে) সাক্ষ্যসিন্দুক ফিরিযে আনতে গেলেন| ঐ সাক্ষ্যসিন্দুককে করূব দূতদের ঊর্দ্ধে যিনি বসেন সেই প্রভু ঈশ্বরের সিন্দুকও বলা হত| 7 সবাই মিলে সাক্ষ্যসিন্দুকখানা অবীনাদবের বাড়ি থেকে বের করে নতুন একটা ঠেলা গাড়িতে বসালেন| উষঃ আর অহিযো ঐ গাড়িকে পথ দেখাচ্ছিলেন| 8 দায়ূদ ও ইস্রায়েলের লোকরা বাঁশি, বীণা, ঢাক, খোল, কর্তাল, শিঙা বাজিযে ঈশ্বরের বন্দনা গান গেযে ঈশ্বরের সামনে উত্সব পালন করছিলেন| 9 কীদোনের শস্য মাড়াইযের উঠান পর্য়ন্ত আসার পর য়ে ষাঁড়গুলো গাড়ি টানছিল তারা হোঁচট খাওয়ায সাক্ষ্যসিন্দুকটা প্রায় পড়ে যাচ্ছিল, উষঃ কোনমতে হাত বাড়িযে সিন্দুকটাকে আটকালেন| 10 কিন্তু ঐ সিন্দুক স্পর্শ করার অপরাধে রুদ্ধ প্রভু ঘটনাস্থলেই উষের প্রাণ নিলেন| 11 এই ঘটনায দায়ূদ অত্যন্ত রুদ্ধ হন| তারপর থেকে ঐ জায়গা “পেরস-উষঃ” নামে পরিচিত| 12 ঈশ্বরের রোষে ভয় পেয়ে দায়ূদ বললেন, “আমি আর এই সাক্ষ্যসিন্দুক আমার কাছে নিতে পারব না!” 13 তাই দায়ূদ সাক্ষ্যসিন্দুকটি দায়ূদ নগরে নিজের কাছে না এনে গাতের ওবেদ-ইদোমের বাড়িতে রেখে এলেন| 14 সাক্ষ্যসিন্দুকটা তিন মাসের জন্য ওবেদ-ইদোমের বাড়িতে রাখা হয়েছিল| এজন্য ওবেদ-ইদোমের পরিবারের প্রতি এবং তার নিজের সব জিনিষের ওপর প্রভুর আশীর্বাদ বর্ষিত হয়|
1 সোরের রাজা হীরম, দায়ূদের জন্য একটি সুন্দর বাড়ি বানাতে চেয়ে তাঁর কাছে কাঠের গুঁড়ি এবং পাথর-কাটুরে ও ছুতোর মিস্ত্রি পাঠালেন| 2 দায়ূদ তখন উপলব্ধি করলেন য়ে প্রভু আসলে তাঁকে ইস্রায়েলের রাজা হিসেবে মনোনীত করেছেন| প্রভু দায়ূদের সাম্রাজ্য় সুবিশাল ও তার ভিত সুদৃঢ় করেছিলেন কারণ ঈশ্বর দায়ূদ ও ইস্রায়েলের লোকদের ভালবাসতেন| 3 দায়ূদ জেরুশালেম শহরে অনেককে বিয়ে করেন এবং তাঁর বহু পুত্রকন্যা হয়| 4 জেরুশালেমে দায়ূদের য়ে সমস্ত সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিল তাদের নাম: শম্মূয, শোব্ব, নাথন, শলোমন, 5 য়িভর, ইলীশূয, ইল্পেলট, 6 নোগহ, নেফগ, যাফিয, 7 ইলীশামা, বীলিযাদা এবং ইলীফেলট| 8 পলেষ্টীয়রা যখন দায়ূদ সম্পর্কে জানতে পারল য়ে দায়ূদ ইস্রায়েলের রাজা হিসেবে মনোনীত হয়েছে, তারা তখন দায়ূদকে খুঁজতে বের হল| দায়ূদ পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করলেন| 9 পলেষ্টীয়রা রফাযীমের লোকদের আক্রমণ করে তাদের জিনিসপত্র অপহরণ করল| 10 দায়ূদ ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করব? আপনি কি আমার সহায় হয়ে পলেষ্টীয়দের যুদ্ধে হারাতে সাহায্য করবেন?”প্রভু দায়ূদকে উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ যাও| আমি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে জয় লাভে তোমার সহায় হব|” 11 তখন দায়ূদ ও তাঁর লোকরা গিয়ে বাল্-পরাসীমে জড়ো হলেন এবং সেখানে তাঁরা পলেষ্টীয়দের যুদ্ধে পরাজিত করলেন| দায়ূদ বললেন, “বাঁধ ভাঙা জল য়েমন তোড়ে বেরিয়ে আসে ঈশ্বর সেই ভাবে আমার শএুদের ভেদ করেছেন| ঈশ্বর আমার সহায় ছিলেন বলেই এটা সম্ভব হল|” সেই কারণে ঐ জায়গার নাম ‘বাল্-পরাসীম’ রাখা হয়েছিল| 12 পলেষ্টীয়রা ওখানে ওদের আরাধ্য দেবদেবীর মূর্ত্তি ফেলে গিয়েছিল| দায়ূদ তাঁর লোকেদের সেই সমস্ত পুড়িয়ে দিতে নির্দেশ দিলেন| 13 পলেষ্টীয়রা রফাযিম উপত্যকার লোকদের আবার আক্রমণ করলে, 14 দায়ূদ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন| ঈশ্বর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বললেন, “দায়ূদ, আক্রমণের সময় পলেষ্টীয়দের পিছু ধাওযা করে পাহাড়ে না গিয়ে চতুর্দিক থেকে ঘিরে গাছের আড়ালে লুকিয়ে থেকো| 15 তারপর গাছের ওপর কাউকে তুলে দিয়ে নজর রাখবে| য়েই পলেষ্টীয়দের পায়ের শব্দ শুনতে পাবে, তাদের আক্রমণ করবে| আমি, ঈশ্বর তোমাদের আগে বেরিয়ে যাব এবং পলেষ্টীয় সেনাদলকে পরাজিত করব|” 16 দায়ূদ হুবহু ঈশ্বরের নির্দেশ অনুযায়ীপথ অনুসরণ করে পলেষ্টীয় সেনাবাহিনীকে পরাজিত করলেন এবং গিবিয়োন শহর থেকে গেষর পর্য়ন্ত পলেষ্টীয় সেনাদের হত্যা করলেন| 17 এ ঘটনার পর দায়ূদের খ্যাতি সমস্ত দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়ল এবং প্রভু সমস্ত জাতিদের দায়ূদের পরাএমের ভয়ে ভীত করে তুললেন|
1 দায়ূদ নগরে নিজের জন্য প্রাসাদ বানানোর পর দায়ূদ সাক্ষ্যসিন্দুকটি রাখার জন্য একটি বিশেষ তাঁবু নির্মাণ করে বললেন, 2 “শুধুমাত্র লেবীয়রাই এই সাক্ষ্যসিন্দুকটা বয়ে নিয়ে য়েতে পারবে কারণ কেবলমাত্র প্রভু তাদেরই এই কাজের জন্য এবং চিরদিন তাঁর সেবার জন্য বেছে নিয়েছেন|” 3 সাক্ষ্যসিন্দুকটি রাখার জন্য য়ে জায়গাটি তৈরী হয়েছিল সেখানে সাক্ষ্যসিন্দুকটি আনবার জন্য দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের জেরুশালেমে জড়ো হতে ডাক দিলেন| 4 এরপর দায়ূদ হারোণ ও লেবীয় বংশের সমস্ত উত্তরপুরুষদের ডেকে পাঠালেন| 5 এঁদের মধ্যে 120 জন ছিলেন কহাতের পরিবারগোষ্ঠীর সদস্য, ঊরীযেল তাঁদের নেতা| 6 মরারি পরিবারগোষ্ঠী থেকে অসাযের নেতৃত্বে এসেছিলেন 220 জন, 7 গের্শোন পরিবারগোষ্ঠী থেকে য়োয়েলের নেতৃত্বে 130 জন, 8 শময়িয়র নেতৃত্বে ইলীষাফণ পরিবারগোষ্ঠী থেকে 200 জন, 9 হিব্রোণ পরিবারগোষ্ঠী থেকে ইলীযেলের নেতৃত্বে 80 জন আর 10 অম্মীনাদবের নেতৃত্বে উষীযেল পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 112 জন ব্যক্তি| 11 এরপর দায়ূদ যাজক সাদোক আর অবিযাথর ছাড়াও, লেবীয়দের মধ্যে ঊরীযেল, অসায, য়োয়েল, শময়িয়, ইলীযেল ও অম্মীনাদবকে ডেকে পাঠিয়ে 12 তাঁদের বললেন, “তোমরা সকলেই লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর নেতা| তোমরা প্রথমে নিজেদের পবিত্র করে তারপর সাক্ষ্যসিন্দুকটা রাখার জন্য আমি য়ে জায়গা তৈরী করেছি সেখানে নিয়ে এস| 13 গতবার আমরা প্রভুর কাছে সাক্ষ্যসিন্দুকটা কি ভাবে নেওয়া হবে তা জিজ্ঞেসও করিনি এবং তোমরা লেবীয়রাও সাক্ষ্যসিন্দুকটা বহন কর নি| তাই প্রভু আমাদের শাস্তি দিয়েছিলেন|” 14 তখন যাজকগণ ও লেবীয়রা প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সাক্ষ্যসিন্দুকটা বহন করার জন্য নিজেদের পবিত্র করলেন| 15 এবং মোশি য়ে ভাবে ঈশ্বরের কথা অনুযায়ীসাক্ষ্যসিন্দুক বহন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঠিক সেভাবেই লেবীয়রা বিশেষ ধরণের খুঁটি ব্যবহার করে কাঁধে করে সাক্ষ্যসিন্দুকটা বয়ে নিয়ে এলেন| 16 দায়ূদ লেবীয় নেতাদের সঙ্গে তাঁদের সতীর্থ গায়কদেরও ডেকে পাঠিয়ে বীণা, বাঁশি, খোল, কর্তাল, ভেঁপু বাজিযে আনন্দের গান গাইতে বললেন| 17 লেবীয়রা তখন য়োয়েলের পুত্র হেমন ও তার ভাই আসফ ও এথনকে নির্বাচিত করল| আসফ ছিল বেরিখিয়র পুত্র| এথন ছিল কূশাযার পুত্র| এই সব পুরুষরা ছিল মরারি পরিবারগোষ্ঠীর লোক| 18 তাদের সঙ্গে ছিল তাদের সাহায্যকারীরা, তাদের আত্মীয়স্বজন, সখরিয়, যাসীযেল, শমীরামোত্, য়িহীযেল, উন্নি, ইলীয়াব, বনায়, মাসেয, মত্তিথিয়, ইলীফলেহূ, মিক্নেয়, ওবেদ-ইদোম ও যিয়ীয়েল| এরা ছিল লেবীয় দ্বাররক্ষীগণ| 19 হেমন, আসফ আর এথন বাজালেন কর্তাল| 20 সখরিয়, অসীযেল, শমীরামোত্, য়িহীযেল, উন্নি, ইলীয়াব, মাসেয আর বনায় বাজালেন বীণা, 21 মত্তিথিয়, ইলীফলেহূ, মিক্নেয়, ওবেদ-ইদোম, যিয়ীয়েল আর অসসিয় নীচু সুরে বীণা বাজালেন| 22 লেবীয় নেতা কননিয ছিলেন গানের দায়িত্বে কারণ তিনি ছিলেন গানে পারদর্শী| 23 সাক্ষ্যসিন্দুকের জন্য দুই রক্ষী ছিলেন বেরিথিয আর ইল্কানা| 24 শবনিয়, য়িহোশাফট, নথলেন, অমাসয়, সখরিয়, বনায় আর ইলীযেষর যাজকেরা শিঙা বাজিযে সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে হাঁটতে লাগলেন| ওবেদ-ইদোম ও য়িহিযও সাক্ষ্যসিন্দুক পাহারা দেবার কাজে নিযুক্ত ছিলেন| 25 দায়ূদ, ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ ও সেনাধ্যক্ষরা সকলে সাক্ষ্যসিন্দুকটা ওবেদ-ইদোমের বাড়ি থেকে আনতে গেলেন, সকলেই তখন উল্লসিত| 26 য়ে সমস্ত লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করছিলেন ঈশ্বর অন্তরাল থেকে তাদের সহায় হলেন| সাতটা ষাঁড় ও মেষকে এই উপলক্ষ্যে উত্সর্গ করা হল| 27 য়ে সমস্ত লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করেছিলেন তাঁরা সকলেই মিহি মসীনার তৈরী বিশেষ পরিচ্ছদ পরেছিলেন| কনানিয যিনি গানের এবং সমস্ত গায়কদের দায়িত্বে ছিলেন তিনি এবং দায়ূদও মিহি মসীনার তৈরী পোশাক পরেছিলেন| দায়ূদ মিহি মসীনার তৈরী এফোদও পরেছিলেন| 28 আনন্দে চিত্কার করতে করতে ভেড়ার শিঙা, তূরী-ভেরী বাজাতে বাজাতে, বীণা, বাদ্যযন্ত্র এবং খঞ্জনীর বাজনার সঙ্গে ইস্রায়েলের লোকরা সাক্ষ্য-সিন্দুকটা নিয়ে এলেন| 29 সাক্ষ্যসিন্দুকটা দায়ূদ নগরীতে এসে পৌঁছনোর পর দায়ূদ যখন নাচছিলেন এবং উদযাপন করছিলেন তখন শৌলের কন্যা মীখল একটা জানলা দিয়ে দেখছিল| দায়ূদের প্রতি তার যাবতীয় শ্রদ্ধা অন্তর্হিত হল কারণ সে ভাবল দায়ূদ বোকার মতো আচরণ করছে|
1 সাক্ষ্যসিন্দুকটা নিয়ে এসে লেবীয়রা সেটাকে দায়ূদের বানানো তাঁবুর মধ্যে রাখলেন| তারপর ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করা হল| 2 দায়ূদের নৈবেদ্য অর্পণ করা শেষ হলে তিনি প্রভুর নামে সমস্ত লোকদের শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ জানালেন| 3 এরপর তিনি ইস্রায়েলের প্রত্যেক পুরুষ ও নারীকে একখানা করে গোটা পাঁউরুটি, কিছু খেজুর, কিস্মিস্ ও পিঠে বিতরণ করলেন| 4 সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে কাজকর্ম করবার জন্য দায়ূদ কিছু লেবীয়কে নিয়োগ করলেন| এই সমস্ত লেবীয়দের মূল কাজ ছিল প্রভুর স্তবগান ও প্রশংসা করা| 5 য়ে দলটি খঞ্জনী বাজাত, আসফ ছিল সেই দলটির নেতা| সখরিয় ছিলেন দ্বিতীয় দলটির নেতা| অন্যান্য লেবীয়রা ছিলেন যিয়ীয়েল, শমীরামোত্, য়িহীযেল, মত্তিথিয়, ইলীয়াব, বনায়, ওবেদ-ইদোম এবং যিয়ীয়েল| এদের কাজ ছিল বীণা এবং অন্য এক ধরণের তন্ত্রবাদ্য বাজানো| যাজক বনায় ও য়হসীযেল সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে শিঙা ও কাড়া-নাকাড়া বাজানোর দায়িত্ব পালন করতেন| সেই দিন দায়ূদ, আসফ ও তাঁর সতীর্থদের প্রভুর প্রশংসা ও কীর্তনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন| 6 7 8 প্রভুর প্রশংসা কর আর তার নাম নাও| তিনি য়ে সমস্ত মহান কাজ করেছেন সবাইকে সে কথা বলো| 9 প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও| তাঁর প্রশংসা কর| তাঁর মহত্ কীর্তির কথা সবাইকে জানাও| 10 প্রভুর পবিত্র নাম করে গর্বিত হও| তোমরা যারা তাঁকে চাও তারা আনন্দিত হও! 11 প্রভুর দিকে এবং তাঁর শক্তির দিকে তাকাও| সর্বদা তাঁর সন্ধান কর| 12 তিনি য়ে সব অলৌকিক কাজ করেছেন সেই সব মনে রেখো| মনে রেখো তাঁর সমস্ত সিদ্ধান্ত আর তাঁর দ্বারা কৃত চমত্কার! 13 ইস্রায়েলের লোকরা, যাকোবের উত্তরপুরুষরা সকলেই প্রভুর দাস এবং প্রভুর মনোনীত লোক| 14 প্রভু আমাদের ঈশ্বর এবং তাঁর সিদ্ধান্ত সর্বত্র বিরাজমান| 15 সর্বদা তাঁর চুক্তি মনে রেখো| হাজার হাজার পুরুষ ধরে তাঁর আজ্ঞা মনে রেখো| 16 অব্রাহামের সঙ্গে তাঁর য়ে চুক্তি হয়েছিল সেটি এবং ইসহাককে করা তাঁর প্রতিশ্রুতি মনে রেখো| 17 যাকোবের জন্য প্রভু এটিকে একটি আইনস্বরূপ করে দিয়েছিলেন| ইস্রায়েলের সঙ্গে তিনি একটি চুক্তি করেছিলেন যা চিরস্থায়ী হবে| 18 প্রভু ইস্রায়েলকে বলেছিলেন: “কনানীযদের বাসভূমি আমি তোমাদেরই দেবো|” প্রতিশ্রুত ভূখণ্ডটি তোমাদের হবে|” 19 তখন জনসংখ্যা ছিল কম, মুষ্টিমেয কিছু লোক| 20 যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াতো দেশ থেকে দেশান্তরে| 21 কিন্তু প্রভু কাউকে তাদের আঘাত করতে দেননি এবং রাজাদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন য়েন তারা তাদের কোন ক্ষতি না করে| 22 এই সব রাজাদের প্রভু বলেছেন: “আমার মনোনীত লোকদের এবং ভাব্বাদীদের কেউ য়েন আঘাত না করে|” 23 সমস্ত ভুবন, প্রভুর বন্দনা করো| প্রভু কেমন করে আমাদের রক্ষা করেন সেই সুখবর প্রতিদিন বলো| 24 সমস্ত জাতিকে প্রভুর মহিমার কথা বলো| তাঁর অলৌকিক কীর্তির কথাও সবাইকে বলো| 25 প্রভু মহান এবং প্রশংসার যোগ্য| অন্য সমস্ত দেবতাদের থেকে তিনি শ্রদ্ধেয় ও ভীতিকর| 26 কেন? কারণ অন্য সমস্ত জাতির দেবদেবী শুধু মূল্যহীন পুতুলমাত্র| প্রভু বয়ং আকাশ বানিয়েছেন| 27 প্রভু মহিমাময এবং দীপ্তিমান| তিনি যেখানে থাকেন সেখানে শক্তি এবং আনন্দ বিরাজ করে| 28 সমস্ত লোক ও পরিবারগুলি প্রভুর মহিমা ও শক্তির প্রশংসা করো! 29 প্রভুর মহিমার গান গাও| তাঁর নামের মাহাত্ম্য কীর্তন করো| প্রভুর চরণে তোমাদের নৈবেদ্য উত্সর্গ করো| তাঁকে সুন্দর ও পবিত্র পোশাকে উপাসনা করো| 30 প্রভুর সামনে সমস্ত পৃথিবীর ভয়ে কম্পমান হওয়া উচিত্, কিন্তু ঈশ্বর পৃথিবীকে সুদৃঢ় করেছেন সুতরাং তা নড়বে না| 31 আকাশে এবং মাটিতে আনন্দ ধ্বনিত হোক; বিশ্ব-চরাচরে সবাই বলে উঠুক, “প্রভুই এই পৃথিবীর নিযামক|” 32 সমুদ্র এবং তার ভেতরের সব কিছুই আনন্দে চিত্কার করুক| মাঠগুলি এবং সেখানে যা কিছু আছে তারা আনন্দ প্রকাশ করুক| 33 আনন্দে মশগুল অরণ্যের বৃক্ষরাশি প্রভুর সামনে গান করবে! কেন? কারণ প্রভু আসছেন পৃথিবীর বিচার করতে| 34 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও কারণ তিনি ভাল| তাঁর আশীর্বাদ ও করুণা চিরন্তন| 35 প্রভুকে বলো, “হে ঈশ্বর, আমাদের পরিত্রাতা আমাদের ঐক্যবদ্ধ কর| সমস্ত জাতির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো| তাহলে আমরা তোমার পবিত্র নামের প্রশংসা করতে পারবো| তোমার মহিমার প্রশংসা করতে পারবো|” 36 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সর্বদা য়েভাবে প্রশংসিত হয়েছেন, চির দিন সে ভাবেই তাঁর প্রশংসা হোক|”সমস্ত লোক প্রভুর প্রশংসা করে সমবেত ভাবে বলে উঠলো, “আমেন!” 37 তারপর আসফ আর তাঁর ভাইদের দায়ূদ প্রতিদিন সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে সেবা করার জন্য রেখে গেলেন| 38 য়িদূথূনের পুত্র ওবেদ-ইদোম ও আরো 68 জন লেবীয়কেও দায়ূদ আসফের কাছে রেখে গেলেন| ওবেদ-ইদোম আর হোষা দুজনেই প্রহরী ছিলেন| 39 গিবিয়োনে প্রভুর তাঁবুতে বেদীর সামনে সেবা করার জন্য দায়ূদ সাদোক ও তাঁর সতীর্থ যাজকদের রেখে এসেছিলেন| 40 প্রতি দিন সকালে আর বিকেলে সাদোক ও অন্যান্য যাজকরা মিলে প্রভুর ইস্রায়েলকে দেওয়া বিধি-পুস্তক অনুসারে বেদীতে হোমবলি উত্সর্গ করতেন| 41 প্রভুর প্রশংসা গীত গাইবার জন্য হেমন, য়িদূথূন এবং অন্যান্য লেবীয়দের প্রত্যেকের নাম ধরে নির্বাচন করা হয়েছিল, কারণ তাঁর প্রেম চির প্রবহমান| 42 হেমন আর য়িদূথূনকে সকলের সঙ্গে খঞ্জনি এবং তূরী-ভেরী বাজাতে হত| ঈশ্বরের নাম বন্দনার সময়ে তাঁরা অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রও বাজাতেন| য়িদূথূনের পুত্ররা তাঁবুর দরজায পাহারা দিতো| 43 এই সমস্ত উত্সবের পর প্রত্যেকে য়ে যার বাড়িতে ফিরে গেল| রাজা দায়ূদও তাঁর পরিবারকে আশীর্বাদ করতে নিজের প্রাসাদে ফিরে গেলেন|
1 প্রাসাদে ফিরে আসার পর দায়ূদ ভাব্বাদী নাথনকে বললেন, “আমি এরস কাঠের তৈরি রাজপ্রাসাদে বাস করি, কিন্তু সাক্ষ্যসিন্দুকটা পড়ে আছে তাঁবুতে| আমি ওটির জন্য একটা মন্দির বানাতে চাই|” 2 নাথন উত্তর দিলেন, “তুমি যা করতে চাও করো, ঈশ্বর বয়ং তোমার সহায়|” 3 সে দিন রাতে, ঈশ্বরের বার্তা নাথনের কাছে এলো| ঈশ্বর বললেন, “যাও আমার নাম করে আমার সেবক দায়ূদকে গিয়ে বলো: ‘দায়ূদ আমার মন্দির তুমি বানাবে না| 4 5 ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে উদ্ধার করার পর থেকে এখন পর্য়ন্ত আমি কোন মন্দিরে বাস করি নি| আমি তাঁবু থেকে তাঁবুতে ঘুরে বেড়িযে অধিষ্ঠান করেছি, ইস্রায়েলীয়দের জন্য নেতা নির্বাচন করেছি| ঐ সমস্ত নেতারা আমার ভক্ত ও সেবকদের দিশারী হবে| এক তাঁবু থেকে আরেক তাঁবুতে বাস করার সময় আমি কখনো এই সব নেতাদের বলিনি, ‘তোমরা কেন আমার জন্য দামী কাঠের মন্দির বানাও নি?’ 6 7 “এখন আমার সেবক দায়ূদকে গিয়ে বলো: সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, ‘আমি তোমাকে মাঠ থেকে তুলে এনে মেষপালকের পরিবর্তে ইস্রায়েলে আমার ভক্তদের রাজা বানিয়েছি| 8 তুমি যখন যেখানে গিয়েছ আমি তোমার সহায় হয়ে, তোমার আগে আগে সেখানে গিয়ে তোমার শএুদের নিধন করেছি| এবার আমি তোমাকে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা খ্যাতিমান ব্যক্তিদের একজনে পরিণত করব| 9 আমি এই জায়গা ইস্রায়েলীয়দের দিলাম| আমি ওদের এখানে বসালাম এবং ওরা এখানে বসবাস করবে| কেউ তাদের উত্যক্ত করবে না| দুষ্ট জাতিরাও আগের মতো তাদের আক্রমণ করবে না| 10 য়েদিন থেকে আমি আমার লোকদের নেতৃত্ব দেবার জন্য বিচারকদের নিযুক্ত করেছি, সেই দিন থেকে আমি তোমাদের শএুদের জয় করে চলেছি|“‘এবার, আমি তোমায় বলছি য়ে প্রভু তোমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করবেন| 11 মৃত্যুর পর তুমি যখন তোমার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে য়োগ দেবে আমি তোমার নিজের পুত্রকে নতুন রাজা করব এবং তার রাজত্ব সুদৃঢ় করব| 12 তোমার পুত্র আমার জন্য একটি মন্দির বানাবে আর আমি তোমার পুত্রের পরিবারকে আজীবন রাজত্ব করতে দেব| 13 তোমার আগে যিনি রাজা হিসাবে শাসন করতেন সেই শৌলের ওপর থেকে যদিও আমি আমার সমর্থন সরিয়ে নিয়েছিলাম কিন্তু তোমার পুত্রকে আমি সব সময়ই ভালবাসব| আমি হব তার পিতা এবং সে হবে আমার পুত্র| 14 তাকে চির জীবনের জন্য আমার মন্দির ও রাজত্বের ভার অর্পণ করব| আর তার শাসন চিরস্থায়ী হবে|”‘ 15 নাথন দায়ূদকে এই দর্শন এবং ঈশ্বর যা বলেছেন তা জানালেন| 16 রাজা দায়ূদ তখন পবিত্র তাঁবুতে গিয়ে প্রভুর সামনে বসে বললেন, “হে প্রভু ঈশ্বর, তুমি কোন অজ্ঞাত কারণে আমার ও আমার পরিবারের প্রতি বরাবর অসীম করুণা করে এসেছো|” 17 ঈশ্বর এটা কি তোমার কাছে এত ক্ষুদ্র, য়ে তুমি আমায় দূর ভবিষ্যতে আমার পরিবারের ভাগ্য বলবে? হে ঈশ্বর, তুমি কি আমাকে সামান্য লোকের চেয়ে বেশী কিছু দেখো? 18 তুমি আমার জন্য এতো করেছ আমি আর কি-ই বা বলতে পারি! তুমি তো জানোই আমি তোমার আজ্ঞাবহ দাসানুদাস মাত্র| 19 হে প্রভু, শুধু তোমার ইচ্ছাতেই আমার জীবনে এই সব মহত্ ঘটনা ঘটেছে| তুমি এ সমস্ত মহত্ ঘটনাকে জ্ঞাত করতে চেয়েছিলে| 20 এ জগতে তোমার মতো আর কেই বা আছে? তুমি ছাড়া অন্য কোন ঈশ্বর নেই| তুমি ছাড়া আর কোন দেবতা কখনো এতো বিস্মযকর ও মহান কাজ করেননি! 21 ইস্রায়েলই পৃথিবীতে এক মাত্র দেশ যার জন্য তুমি এত মহত্ ও শ্রদ্ধাপূর্ণ ভয়ের কাজকর্ম করেছ| তুমিই আমাদের মিশর থেকে উদ্ধার করে মুক্ত করেছ| নিজ গুণেই তুমি খ্যাতি অর্জন করেছ| তোমার ভক্তদের নেতৃত্ব দিয়ে তুমি বিজাতীযদের আমাদের জন্য তাদের নিজস্ব বাসভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য করেছ| অন্য কোন লোকের ঈশ্বর এই রকম করেনি| 22 ইস্রায়েলীয়দের তুমি চির কালের জন্য তোমার লোক হিসেবে বেছে নিয়েছো| এবং তুমিই তাঁদের ঈশ্বর হয়েছো| 23 “হে প্রভু, তুমি আমার ও আমার পরিবারের কাছে য়ে প্রতিজ্ঞা করলে তা য়েন চির দিন তোমার স্মরণে থাকে| তুমি যা বললে তাই য়েন ঘটে| 24 তোমার নাম চির কালের জন্য বিশ্বাস ভাজন ও মহান হোক| লোকরা য়েন বলে, ‘সর্বশক্তিমান প্রভু হলেন ইস্রায়েলের ঈশ্বর!’ য়েন তোমার সেবক হিসাবে দায়ূদের গৃহ চির কালের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়| 25 “হে প্রভু, তুমি আমাকে, তোমার দাসকে বলেছ য়ে, আমার বংশকে তুমি রাজবংশে পরিণত করবে| তাই আমি এতো সাহস করে তোমার কাছে এই সমস্ত প্রার্থনা করতে পারছি| 26 হে প্রভু, তুমিই ঈশ্বর, তুমি তোমার নিজের কথা দিয়েই আমার জন্য এই সব জিনিষ করতে সম্মত হয়েছিলে| 27 প্রভু, তুমি দযা করে আমার পরিবারকে আশীর্বাদ করেছ এবং আমার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছ য়ে আমার পরিবার তোমায় সেবা করে চলবে| প্রভু য়েহেতু তুমি বয়ং আমার পরিবারকে আশীর্বাদ করেছ তারা চির কালই তোমার আশীর্বাদ-ধন্য থাকবে|”
1 দায়ূদ পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করে তাদের যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে গাত্ ও তার পার্শ্ববর্তী ছোটখাটো শহরগুলি দখল করে নিয়ে নেন| 2 এরপর তিনি মোয়াবীয়দের হারিয়ে তাদের নিজের বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য করান| মোয়াবীয়রা দায়ূদের জন্য নিয়মিত উপঢৌকন পাঠাতো| 3 সোবার রাজা হদরেষরের সেনাবাহিনীর সঙ্গেও দায়ূদ যুদ্ধ করেন| হদরেষর ফরাত্ নদী পর্য়ন্ত তার রাজত্ব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দায়ূদ তার সেনাবাহিনীকে হমাত পর্য়ন্ত পিছু হঠতে বাধ্য করেছিলেন| 4 তিনি হদরেষরের কাছ থেকে 7,000 রথের সারথী সহ 1,000 রথ, 20,000 সৈনিক আদায করা ছাড়াও হদরেষরের অধিকাংশ রথ নষ্ট করে দিয়েছিলেন| শুধুমাত্র 100 রথ তিনি অবশিষ্ট রেখেছিলেন| 5 অরামীয়রা দম্মেশক থেকে সোবার রাজা হদরেষরকে সাহায্য করতে এলে দায়ূদ তাদেরও পরাজিত করেন এবং 22,000 অরামীয় সেনাকে হত্যা করেন| 6 এরপর দায়ূদ অরামের দম্মেশকে দুর্গ বানান| অরামীয়রা তাঁর বশ্যতা স্বীকার করে তাঁর জন্য উপঢৌকন আনতে শুরু করে| প্রভু দায়ূদকে সর্বত্র বিজয়ী করেছিলেন| 7 হদরেষরের সেনাবাহিনীর থেকে সোনার ঢালগুলি দায়ূদ জেরুশালেমে এনেছিলেন| 8 টিভত্ ও কূন শহর থেকে তিনি প্রচুর পরিমাণে পিতলও এনেছিলেন| এই শহরগুলি ছিল হদরেষরের অধিকারে| পরবর্তীকালে, শলোমন এই সমস্ত পিতল মন্দিরের জন্য পিতলের জলাধার, পিতলের থামসমূহ এবং পিতলের অন্যান্য জিনিষ বানাবার কাজে ব্যবহার করেছিলেন| 9 হমাতের রাজা তযূ যখন খবর পেলেন, দায়ূদ সোবার রাজা হদরেষরের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছেন, 10 তখন তিনি তাঁর পুত্র হদোরামকে দিয়ে সন্ধিপ্রস্তাব করে দায়ূদের কাছে আশীর্বাদ নিতে পাঠালেন য়েহেতু দায়ূদ হদরেষরকে পরাজিত করেছিলেন| হদরেষর তযূর সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন| দায়ূদ, হদরেষরকে পরাজিত করায তযূ হদোরামের হাত দিয়ে সোনা, রূপো ও পিতলের বহু মূল্যবান সামগ্রী পাঠিয়েছিলেন| 11 ইদোম, মোযাব, অম্মোন, অমালেক এবং পলেষ্টীয় থেকে দায়ূদ য়ে সোনা, রূপো এবং পিতলের জিনিষপত্র পেয়েছিলেন তা দিয়ে তিনিও একই কাজ করলেন| তিনি এগুলি প্রভুর উদ্দেশ্যে নিবেদন করলেন| 12 লবণ উপত্যকায সরূযার পুত্র অবীশয় 18,000 ইদোমীয়কে হত্যা করে 13 অবীশয় ইদোমে এক সৈন্যবাহিনীর দলও বসাল এবং ইদোমীয়রা দায়ূদের বশ্যতা স্বীকার করে| প্রভু দায়ূদকে সর্বত্রই বিজয়ী করেছিলেন| 14 সমস্ত ইস্রায়েলের শাসক দায়ূদ তাঁর সমস্ত প্রজাদের প্রতি ন্যায় ও সম বিচার নিয়ে ইস্রায়েল শাসন করেন| 15 তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন সরূযার পুত্র য়োয়াব| অহীলূদের পুত্র য়িহোশাফট দায়ূদের সমস্ত কার্য়কলাপ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন| 16 অহীটূবের পুত্র সাদোক আর অবিযাথরের পুত্র অবীমেলক যাজক ছিলেন| শব্শ ছিলেন লেখক| 17 যিহোয়াদার পুত্র বনায়ের দায়িত্ব ছিল করেথীয ও পলেথীযদের পরিচালনা করা| দায়ূদের পুত্ররাও গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং পিতার পাশে থেকে রাজকার্য়ে সহায়তা করতেন|
1 অম্মোনীয়দের রাজা নাহশের মৃত্যু হলে তাঁর জায়গায় তাঁর পুত্র হানূন রাজা হলেন| 2 দায়ূদ তখন বললেন, “নাহশের সঙ্গে আমার বন্ধুর সম্পর্ক ছিল, এই শোকের সময় তাঁর পুত্র হানূনকে আমার সহানুভূতি দেখানো কর্তব্য|” এই বলে তিনি অম্মোনে হানূনকে সমবেদনা জানাতে বার্তাবাহক পাঠালেন| 3 কিন্তু অম্মোনীয় নেতারা নতুন রাজাকে কুমন্ত্রণা দিয়ে বললেন, “মোটেই ভাববেন না য়ে দায়ূদ সহানুভূতি জানানোর জন্য এই সব লোকদের পাঠিয়েছে| এরা আসলে দায়ূদের গুপ্তচর| দায়ূদ আপনার রাজ্য় ধ্বংস করতে চায় তাই আপনার ও আপনার রাজত্বের গোপন খবর সংগ্রহ করতে এদের পাঠিয়েছে|” 4 হানূন তখন দায়ূদের কর্মচারীদের গ্রেপ্তার করে তাদের দাড়ি কেটে পরণের পোশাক ছিঁড়ে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দিলেন| 5 দায়ূদের কর্মচারীরা এভাবে ঘরে ফিরতে খুবই লজ্জা পাচ্ছিলেন| কয়েকজন গিয়ে দায়ূদকে তাঁর কর্মচারীদের দুর্গতির কথা জানালে তিনি খবর পাঠালেন, “দাড়ি আবার বড় না হওয়া পর্য়ন্ত তোমরা য়িরীহোতে থাকো| দাড়ি বড় হবার পর ঘরে ফিরে এসো|” 6 অম্মোনীয়রা বুঝলেন য়ে তাঁরা নিজ দোষে নিজেদের দায়ূদের ঘৃণিত শএুতে পরিণত করেছেন| হানূন ও অম্মোনীয়রা তখন 75,000 পাউণ্ড রূপো মূল্যস্বরূপ দিলেন এবং মেসোপটেমিযা, মাখার শহরগুলি ও অরামের সোবা থেকে রথ আর তার জন্য সারথী ভাড়া করে আনলেন| 7 অম্মোনীয়রা 32,000 রথ আনলেন, এছাড়াও তাঁরা অর্থের বিনিময়ে মাখার রাজার সেনাবাহিনীর সাহায্য চাইলেন| মাখার রাজা আর তাঁর সৈন্যসামন্ত এসে মেদবা শহরের কাছে শিবির গেড়ে বসল| আম্মোনীযরাও শহর থেকে বেরিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে লাগল| 8 দায়ূদ খবর পেলেন অম্মোনীয়রা যুদ্ধের তোড়জোড় করছে| তিনি তখন অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সেনাপতি য়োয়াবের নেতৃত্বে ইস্রায়েলের সমগ্র সেনাবাহিনী পাঠালেন| 9 তখন অম্মোনীয়রা যুদ্ধের জন্য তৈরী হয়ে শহরের সিংহ দরজা পর্য়ন্ত এলেন| কিন্তু রাজারা যুদ্ধক্ষেত্রে যাননি এবং নিজেরা মাঠে রযে গিয়েছিলেন| 10 য়োয়াব দেখলেন তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সামনে ও পেছনে সশস্ত্র দুদল সেনাবাহিনী প্রস্তুত হয়ে আছে| য়োয়াব তখন ইস্রায়েলের কিছু সেরা সৈনিককে বেছে নিয়ে তাদের অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠালেন| 11 আর বাদবাকি সৈনিকদের তাঁর ভাই অবীশযের নেতৃত্বে অম্মোনীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠালেন| 12 য়োয়াব অবীশয়কে বললেন, “অরামের সেনারা যদি আমার পক্ষে বেশি শক্তিশালী হয় তো তুমি আমায় সাহায্য করতে এসো| আর যদি ওরা তোমার চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয় তো আমি তোমায় সাহায্য করব! 13 চলো এবার বীরত্ব ও সাহসের সঙ্গে আমাদের ঈশ্বরের শহরগুলোর জন্য ও আমাদের দেশের লোকদের জন্য ওদের ওপর ঝাঁপিযে পড়ি| তারপর তো সবই প্রভুর ইচ্ছে!” 14 এই না বলে, য়োয়াব অরামীয় সেনাবাহিনীর ওপর ঝাঁপিযে পড়লেন| অরামীয় সেনারা তখন পালাতে শুরু করল| 15 আর অম্মোনীয় সেনারা যখন তাদের পালাতে দেখল, তখন তারা নিজেরাও অবীশয় আর তাঁর সেনাবাহিনীর হাত থেকে প্রাণ বাঁচানোর জন্য পালাতে শুরু করল| অম্মোনীয়রা নিজেদের শহরে আর য়োয়াব জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 16 অরামীয় নেতারা, তাঁরা ইস্রায়েলীয়দের কাছে হেরে গিয়েছেন দেখে ফরাত্ নদীর পূর্বদিকের অরামীয়দের কাছে সাহায্য চেয়ে দূত পাঠালেন| শোফক ছিলেন অরামের রাজা হদরেষরের সেনাবাহিনীর সেনাপতি| শোফক অন্য অরামীয় বাহিনীরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| 17 দায়ূদ যখন অরামের সেনাবাহিনীদের যুদ্ধের জন্য একত্র হবার খবর পেলেন, তিনিও ইস্রায়েলের লোকদের একত্র করে তাদের যর্দন নদীর ওপারে পাঠিয়ে দিলেন এবং অরামীয় সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়ে তাদের আক্রমণ করলেন| 18 তারা প্রাণ বাঁচাতে পালাতে শুরু করল| দায়ূদ ও তাঁর সেনাবাহিনী 7,000 অরামীয় সারথী, 40,000 অরামীয় সেনা ও অরামীয়দের সেনাপতি শোফককে হত্যা করলেন| 19 হদরেষরের পদস্থ রাজকর্মচারীরা যখন দেখলেন তাঁরা ইস্রায়েলের হাতে পরাজিত হয়েছেন তাঁরা তখন দায়ূদের সঙ্গে সন্ধি স্থাপন করে তাঁর বশ্যতা স্বীকার করলেন এবং অম্মোনীয়দের আর কখনও সাহায্য না করতে স্বীকৃত হলেন|
1 বসন্তের সময় য়োয়াবের নেতৃত্বে ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী আবার যুদ্ধ করতে বেরোল| সচরাচর এসময়ই রাজা-মহারাজারা যুদ্ধযাত্রা করলেও দায়ূদ কিন্তু জেরুশালেমেই থাকলেন| ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনী অম্মোনে গিয়ে অম্মোন ধ্বংস করে রব্বা শহর চারপাশ থেকে অবরোধ করে সেখানে শিবির গাড়লো| এই ভাবে রব্বা অবরোধ করে শেষ পর্য়ন্ত য়োয়াবের নেতৃত্বে ইস্রায়েলীয় বাহিনী যুদ্ধ করে রব্বাও ধ্বংস করল| 2 দায়ূদ এসে তাদের রাজার মাথা থেকে মুকুট খুলে নিলেন| মুকুটের ওজন ছিল প্রায় 75 পাউণ্ড এবং এটি ছিল বহুমূল্য পাথর খচিত ও সোনার তৈরী| এবং সেই মুকুটটি দায়ূদের মাথায় পরানো হল, তবে তিনিও রব্বা থেকে আরো অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে এলেন| 3 দায়ূদ রব্বার লোকদের ও অম্মোন শহরের বাসিন্দাদের নিয়ে এলেন এবং তাদের করাত, গাঁইতি আর কুঠার দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করে,আবার জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 4 পরবর্তী কালে, পলেষ্টীয়দের সঙ্গে গেষর শহরে ইস্রায়েলীয়দের যুদ্ধ হয়| সে সময়ে, হূশার সিব্বখয সিপপয নামে এক দানব সন্তানকে হত্যা করল| তাই পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের কাছে নিজেদের সমর্পণ করল| 5 আর একবার পলেষ্টীয়দের সঙ্গে ইস্রায়েলীয়দের যখন যুদ্ধ হচ্ছিল, যাযীরের পুত্র ইল্হানন লহমিকে হত্যা করেন, যদিও লহমির হাতে একটি বিশাল ও তীক্ষ্ণ বর্শা ছিল| লহমি ছিল গলিযাতের ভাই| গলিযাত ছিল গাতের লোক| 6 এরপর গাতে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে পলেষ্টীয়দের আবার যুদ্ধ হয়| সে সময় গাতে এক ব্যক্তি বাস করত; তার প্রতি হাতে-পায়ে ছ’টি করে মোট 24টা আঙুল ছিল| দানবের পুত্র ছিল বলে সে এক বিশাল আকার পুরুষ ছিল| 7 ইস্রায়েলকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করার অপরাধে দায়ূদের ভাই শিমিযর পুত্র য়োনাথন তাকে হত্যা করে| 8 এই পলেষ্টীয়রা ছিল গাতের দানবদের সন্তান| দায়ূদ ও তাঁর লোকরা এই সমস্ত দানবদের হত্যা করেছিলেন|
1 শয়তান ইস্রায়েলের লোকদের বিপক্ষে ছিল| তার প্ররোচনায় পা দিয়ে দায়ূদ ইস্রায়েলে আদমশুমারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন| 2 তিনি য়োয়াব ও ইস্রায়েলের নেতাদের ডেকে বললেন, “যাও বের্-শেবা থেকে দান পর্য়ন্ত সমগ্র ইস্রায়েলের জনসংখ্যা গণনা করে আমাকে জানাও| আমি যাতে বুঝতে পারি এদেশে মোট কত জন বাস করে|” 3 কিন্তু য়োয়াব উত্তর দিলেন, “প্রভু তাঁর লোকদের শতগুণ বাড়িযে চলুন! মহারাজ, ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দাই তো আপনার অনুগত ভৃত্য| কেন আপনি এই কাজ করতে চাইছেন? আপনি সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের পাপের ভাগী করবেন|” 4 কিন্তু রাজা দায়ূদ তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় য়োয়াব তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য হলেন| তিনি সমগ্র ইস্রায়েলে ঘুরে ঘুরে জনসংখ্যা গুনে আবার জেরুশালেমে ফিরে খবর দিলেন য়ে 5 ইস্রায়েলে মোট 11,00,000 লোক আছে যারা তরবারির ব্যবহার জানে| আর যিহূদায় এই ধরণের লোকের সংখ্যা 4,70,000| 6 রাজা দায়ূদের নির্দেশ মনঃপুত না হওয়ায য়োয়াব লেবি ও বিন্যামীন পরিবারের বংশধরদের জনসংখ্যা গণনা করেন নি| 7 ঈশ্বরের দৃষ্টিতে দায়ূদ একটি খারাপ কাজ করেছিলেন| তাই প্রভু ইস্রায়েলকে শাস্তি দিলেন| 8 দায়ূদ তারপর ঈশ্বরকে বললেন, “আমি মূর্খের মতো জনসংখ্যা গণনা করে গুরুতর পাপ করেছি| এখন আমি তোমায় অনুনয় করছি, তুমি আমায়, তোমার দাসকে এই পাপ থেকে মুক্ত কর|” 9 প্রভু তখন দায়ূদের ভাব্বাদী গাদকে বললেন, “যাও দায়ূদকে গিয়ে বল: ‘প্রভু এই কথা বলেছেন: তোমাকে শাস্তি দেবার জন্য আমি তিনটে উপায়ের কথা ভেবেছি| তুমি য়ে ভাবে বলবে সে ভাবেই আমি তোমায় শাস্তি দেব|”‘ 10 11 তখন, গাদ নির্দেশ মত দায়ূদকে গিয়ে বললেন, “প্রভু বলেছেন, ‘তোমায় শাস্তি দেবার জন্য তিনটি পথের কথা আমি ভেবেছি| প্রথমটি হল- তিন বছর দেশে দুর্ভিক্ষ হবে| দ্বিতীয়টি হল- যারা তরবারি নিয়ে তাড়া করবে সেই সব শএুদের কাছ থেকে তোমায় তিনমাস ধরে পালিয়ে বেড়াতে হবে| আর তৃতীয়টি হল- তিন দিন তোমাকে প্রভুর হাতে শাস্তি ভোগ করতে হবে| মহামারীতে দেশ ছেযে যাবে| প্রভুর দূতরা ইস্রায়েলের ঘরে ঘরে লোকদের প্রাণ নেবে|’ এবার তুমি বল আমি প্রভুকে কি জানাব|” 12 13 দায়ূদ গাদকে বললেন, “হায! কি বিপদে পড়েছি! আমি কি ভাবে শাস্তি পাবো তা ঠিক করার ভার আমি অন্যদের হাতে দিতে চাই না| প্রভু করুণাময, তিনিই আমায় যথাযোগ্য শাস্তি দেবেন|” 14 অতঃপর প্রভু ইস্রায়েলে মহামারী পাঠালেন, তাতে 70,000 লোকের মৃত্যু হল| 15 প্রভু জেরুশালেমকে ধ্বংস করতে এক জন দেবদূতও পাঠালেন| কিন্তু সে যখন জেরুশালেম ধ্বংস করতে শুরু করল তখন প্রভুর করুণা হল| যিবূষীয় অর্ণানের শস্য মাড়াইযের উঠানের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা সেই দূতকে প্রভু বললেন, “আর নয় থাক! য়থেষ্ট হয়েছে|” 16 দায়ূদ ও নেতারা ওপরে তাকিযে, জেরুশালেমের ওপর প্রভুর তরবারি হাতে প্রভুর সেই দূতকে দেখতে পেলেন| তখন তারা শোকের পোশাক পরে আভূমি নত হলেন| 17 দায়ূদ ঈশ্বরকে বললেন, “আমি জনসংখ্যা গণনা করতে বলে পাপ করেছি| আমিই পাপাত্মা| ইস্রায়েলের লোকরা তো নিরপরাধ| প্রভু আমার ঈশ্বর, মহামারীতে ওদের প্রাণ না নিয়ে তুমি আমায় আর আমার পরিবারকে শাস্তি দাও|” 18 তখন প্রভুর দূত গাদকে বললেন, “দায়ূদকে যিবূষীয় অর্ণানের খামারের কাছে প্রভুর উপাসনার জন্য একটা বেদী নির্মাণ করতে বলো|” 19 গাদ দায়ূদকে একথা জানালে তিনি অর্ণানের খামারে গেলেন| 20 অর্ণান তখন গম ঝাড়াই করছিল| সে পেছন ফিরে দূতকে দেখতে পেল| অর্ণানের চার পুত্র ভয়ে লুকিয়ে পড়লো| 21 দায়ূদ বয়ং হেঁটে হেঁটে টিলার ওপরে অর্ণানের কাছে গেলেন| তাঁকে দেখতে পেয়ে খামার ছেড়ে এসে অর্ণান তাঁর সামনে আভূমি নত হলেন| 22 দায়ূদ বললেন, “তোমার খামার বাড়িটা আমায় বেচে দাও| যা দাম লাগে আমি দেব| তারপর আমি এখানে প্রভুর উপাসনার জন্য একটি বেদী বানাব| তাহলে এই মহামারী বন্ধ হবে|” 23 অর্ণান দায়ূদকে বলল, “আপনিই আমার রাজা ও প্রভু| আপনার যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি অবশ্যই আমার শস্য মাড়াই এর ক্ষেত্রটা নিতে পারেন| এছাড়াও আমি হোমবলির জন্য আপনাকে ষাঁড় আর গম দিচ্ছি এবং মযদা শস্য নৈবেদ্যর জন্য আপনার যা কিছু দরকার সবই আপনাকে দেব|” 24 কিন্তু রাজা দায়ূদ উত্তর দিলেন, “না, তা সম্ভব নয়| আমি তোমার থেকে বিনা মূল্যে কিছু নিয়ে তা প্রভুকে দিতে পারব না| আমি ঈশ্বরকে এমন কিছুই দেব না যার জন্য আমায় দাম দিতে হবে না| তোমাকে আমি এ সব কিছুর পুরো দাম দেব|” 25 তখুনি তিনি অর্ণানকে জায়গাটির জন্য প্রায় 15 পাউণ্ড সোনা দিলেন| 26 তারপর দায়ূদ সেই শস্য মাড়াইযের জায়গায় প্রভুর উপাসনার জন্য বেদী বানালেন| সেই বেদীতে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য দিয়ে দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন| প্রভু আকাশ থেকে বেদীতে অগ্নিশিখা পাঠিয়ে সেই ডাকে সাড়া দিলেন| 27 তারপর প্রভু তাঁর দেবদূতকে উন্মুক্ত তরবারী কোষবদ্ধ করতে আদেশ দিলেন| 28 দায়ূদ দেখলেন, অর্ণানের খামার বাড়িতে প্রভু তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছেন| তিনি সেখানেই প্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান উত্সর্গ করলেন| 29 পবিত্র তাঁবু এবং হোমবলি অর্পণের বেদীটি ছিল গিবিয়োন শহরে একটি উঁচু জায়গায়| ইস্রায়েলের বাসিন্দারা যখন মরুভূমিতে ঘুরছিলেন তখন মোশি এই পবিত্র তাঁবু বানিয়ে ছিলেন| 30 কিন্তু দায়ূদ ঈশ্বরের দূতের তরবারীর ভয়ে পবিত্র তাঁবুতে ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলতে যাননি|
1 দায়ূদ বললেন, “প্রভু ঈশ্বরের মন্দির ও ইস্রায়েলের লোকদের জন্য বেদী এখানেই বানানো হবে|” 2 দায়ূদ ইস্রায়েলে বসবাসকারী সমস্ত বিদেশীদের এক জায়গায় জড়ো হতে নির্দেশ দিলেন| তারপর তিনি তাদের মধ্যে থেকে পাথর-কাটুরেদের বেছে নিলেন| এদের কাজ ছিল, ঈশ্বরের য়ে মন্দির হবে তার জন্য তখন থেকেই পাথর কেটে রাখা| 3 পেরেক ও দরজার কবতৃা বানানোর জন্য দায়ূদ লোহা আনালেন এবং এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পিতল সংগ্রহ করলেন| 4 অজস্র এরস কাঠের গুঁড়িও আনা হল| সীদোন ও সোরীযের বাসিন্দারা অনেক অনেক দামী কাঠের গুঁড়ি এনে দিয়েছিল| 5 দায়ূদ বললেন, “আমরা প্রভুর জন্য সুবিশাল একটা মন্দির বানাতে চলেছি| কিন্তু আমার পুত্র শলোমনের বয়স এখনও কম| এসম্পর্কে উপযুক্ত জ্ঞান তার হয়নি| প্রভুর এই সুবিশাল মন্দিরের খ্যাতি তার সৌন্দর্য়্য়ের কারণে পৃথিবীর দেশে দেশে যাতে ছড়িয়ে পড়ে সে কারণে আমি সেই মন্দিরের নকশা ও পরিকল্পনা করে যাচ্ছি|” কথা মতো তাঁর মৃত্যুর আগেই দায়ূদ মন্দিরের জন্য অনেক পরিকল্পনা ও নকশা করে গিয়েছিলেন| 6 দায়ূদ তাঁর পুত্র শলোমনকে ডেকে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মন্দির বানানোর নির্দেশ দিয়ে বললেন, 7 “শলোমন, আমি প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য একটা মন্দির বানাতে চেয়েছিলাম| 8 কিন্তু প্রভু আমাকে জানালেন, ‘দায়ূদ তুমি অনেক যুদ্ধ করেছ| বহু ব্যক্তির রক্তে ঐ হাত রঞ্জিত করেছ| তাই আমার নামে তুমি কোন মন্দির বানাতে পারবে না| 9 কিন্তু তোমার এক পুত্র হবে শান্তির ধারক ও বাহক| তাকে আমি একটি শান্তিপূর্ণ জীবন দেব এবং তার আশেপাশের শএুরা যাতে তাকে উত্যক্ত না করে দেখব| 10 তার নাম শলোমন এবং তার শাসনকালে আমি ইস্রায়েলকে শান্তি দেব| আমি তাকে সন্তান-জ্ঞানে পালন করব এবং তার রাজ্য়কে সুদৃঢ় করব| তার পরিবারের কেউ না কেউ আজীবন ইস্রায়েলে শাসন করবে|”‘ 11 দায়ূদ শলোমনকে আরো বললেন, “প্রভু তোমার সহায় হোন, যাতে তুমি তাঁর কথা মতোই তোমার প্রভু ঈশ্বরের জন্য এই মন্দির বানাতে সফল হতে পারো|” 12 প্রভু তোমায় ইস্রায়েলের রাজা করবেন| রাজ্য় পরিচালনা এবং প্রভু তোমার ঈশ্বরের বিধি ও অনুশাসন অনুসরণ করার মতো জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিচার বিবেচনাও য়েন তোমাকে দেন| 13 প্রভু প্রদত্ত মোশির বিধি অনুসরণ করে সতর্ক ভাবে জীবন কাটালে তুমি অবশ্যই সফল হবে| ভয়ের কোন কারণ নেই| সাহসে ভর করে বীরপুরুষের মতো জীবনযাপন করো|” 14 “শোনো শলোমন, প্রভুর মন্দির বানানোর পরিকল্পনার জন্য আমি বহু পরিশ্রম করেছি| আমি 3,750 টন সোনা আর 37,500 টন রূপো ছাড়াও য়ে পরিমাণ লোহা আর পিতল জমিযেছি তা ওজন করা প্রায় অসম্ভব! আর আছে অজস্র কাঠ এবং পাথর| শলোমন, এই সব কিছুই তুমি বাড়াতে পার| 15 সুদক্ষ ছুতোর আর পাথর-কাটুরে ছাড়াও সব রকম কাজে দক্ষ কারিগর আর মিস্ত্রিও তোমার আছে| 16 সোনা, রূপো, লোহা, পিতলের কাজ জানা অসংখ্য় কারিগর তুমি পাবে| এবার তোমার কাজ শুরু কর| প্রভু তোমার সহায় হোন|” 17 তারপর দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত নেতাদের তাঁর পুত্র শলোমনকে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়ে বললেন, 18 “এখন বয়ং ঈশ্বর তোমাদের সহায়| তিনি আপনাদের শান্তির সময় দিয়েছেন, চারপাশের বহিঃশএুদের পরাজিত করতে আমায় সাহায্য করেছেন| প্রভু ও তাঁর লোকরা এখন এই দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছেন| 19 এখন প্রভুকে সমস্ত মন-প্রাণ ঢেলে দাও এবং তিনি যা বলেন তাই কর| তাঁর উপযুক্ত করে মন্দির বানানোর কাজে আত্মনিয়োগ কর| তাঁর নামে মন্দির বানিয়ে সাক্ষ্যসিন্দুক ও আর যা কিছু পবিত্র জিনিস আছে মন্দিরে নিয়ে এসো|”
1 রাজা দায়ূদের বয়স হওয়ায তিনি তাঁর পুত্র শলোমনকে ইস্রায়েলের রাজপদে অধিষ্ঠিত করে 2 ইস্রায়েলের সমস্ত নেতা, যাজক ও লেবীয়দের ডেকে পাঠালেন| 3 তিনি গুনে দেখলেন 30 বছরের বেশি বয়স্ক লেবীয়দের সর্বমোট সংখ্যা 38,000 জন| 4 দায়ূদ আদেশ দিলেন, “24,000 জন লেবীয় প্রভুর মন্দির বানানোর কাজের তত্ত্বাবধান করবে| 6,000 লেবীয় আধিকারিক ও বিচারকের কাজ করবে| 5 4,000 লেবীয় দ্বাররক্ষী হবে| এবং আরো 4,000 জন গায়ক হিসেবে কাজ করবে| আমি এদের জন্য য়ে বিশেষ বাদ্যযন্ত্র বানিয়েছি তাই দিয়ে তারা প্রভুর প্রশংসা গীত গাইবে|” 6 দায়ূদ গের্শোন, কহাত্ ও মরারি লেবির পুত্রদের পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে তিন ভাগে ভাগ করলেন| 7 গের্শোন পরিবারগোষ্ঠী থেকে ছিলেন লাদন আর শিমিযি| 8 লাদনের তিন পুত্রের নাম যথাএমে য়িহীযেল, সেথম ও য়োয়েল| 9 আর লাদন পরিবারের নেতা শিমিযির তিন পুত্রের নাম শলোমোত্, হসীযেল ও হারণ| 10 শিমিযির চার পুত্রের নাম যথাএমে য়হত্, সীন, য়িযূশ ও বরীয| 11 য়হত্ ছিল প্রধান এবং সীষ ছিল দ্বিতীয়| কিন্তু য়িযূশ আর বরীযর বেশী পুত্রকন্যা ছিল না বলে তাদের এক পরিবারভুক্ত হিসেবে গণনা করা হয়| 12 কহাতের চার পুত্রের নাম অম্রাম, য়িষ্হর, হিব্রোণ ও উষীযেল| 13 অম্রামের পুত্রদের নাম ছিল হারোণ আর মোশি| হারোণ এবং তাঁর উত্তরপুরুষদের বরাবরের জন্য বিশিষ্ট জন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল| তাঁরা প্রভুর যাবতীয় পূজো-অর্চনা ও ভজনার কাজ সম্পাদন করতেন, প্রভুর সামনে ধুপধূনো দিতেন ও যাজকের কাজও করতেন| প্রভুর নামে লোকদের আশীর্বাদ করবার মর্য়াদাও তাঁদের দেওয়া হয়েছিল| 14 মোশি ছিলেন ঈশ্বরের লোক| 15 তাঁর পুত্র গের্শোম আর ইলীযেষরকে লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্গত হিসেবে ধরা হয়| 16 ইলীযেষরের বড় ছেলের নাম রহবিয আর 17 গের্শোমের বড় ছেলের নাম ছিল শবূযেল| ইলীযেষরের আর কোনো পুত্র না থাকলেও রহবিয়ের আরো অনেক পুত্র ছিল| 18 য়িষ্হরের বড় ছেলের নাম শলোমীত্| 19 হিব্রোণের পুত্রদের মধ্যে প্রধান য়িরিয, দ্বিতীয় অমরিয, তৃতীয় য়হসীযেল আর চতুর্থ য়িকমিযাম| 20 উষীযেলের পুত্রদের নাম যথাএমে মীখা ও য়িশিয| 21 মরারির পুত্রদের নাম মহলি আর মূশি| মহলির পুত্রদের নাম ইলিয়াসর আর কীশ| 22 ইলিয়াসর অপুত্রক অবস্থাতেই মারা গিয়েছিলেন| তাঁর শুধু কয়েকটি কন্যা ছিল, যারা নিজেদের আত্মীয়দের মধ্যেই কীশের পুত্রদের বিয়ে করেছিল| 23 মূশির পুত্রদের নাম মহলি, এদর ও য়িরেমোত্| 24 কুড়ি বছরের বেশি বয়স্ক লেবির উত্তরপুরুষদের মধ্যে যারা প্রভুর মন্দিরে কাজ করেছিল, পরিবার অনুযায়ী তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল| এরা সকলেই নিজেদের পরিবারের প্রধান ছিল| 25 দায়ূদ বলেছিলেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাঁর লোকদের শান্তি দিয়েছেন| চির দিনের জন্য তিনি জেরুশালেমে থাকতে এসেছেন| 26 তাই লেবীয়দের আর পবিত্র তাঁবু বা প্রভুর সেবার উপকরণ বহিতে হবে না|” 27 ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি দায়ূদের শেষ আদেশ ছিল লেবি পরিবারগোষ্ঠীর উত্তরপুরুষের লোকসংখ্যা গণনা করা| 20 বছর বা তার বেশি বয়স্ক সমস্ত লেবীয়দের গোনা হয়েছিল| 28 লেবীয়রা হারোণের উত্তরপুরুষদের মন্দিরে প্রভুর কাজকর্মের সহায়তা করতেন, এছাড়াও তাঁরা মন্দিরের উঠোন এবং আশেপাশের ঘরগুলোর তদারকি করতেন| পবিত্র সামগ্রীর এবং ঈশ্বরের মন্দিরের সমস্ত আসবাবপত্রের শুচিতা রক্ষা করার দায়িত্বও ছিল তাঁদের ওপর| 29 টেবিলের ওপর রুটি রাখবার এবং গম, শস্য নৈবেদ্য ও খামিরবিহীন রুটি রাখবারও দায়িত্ব ছিল তাঁদের ওপর| মন্দিরের বাসন-কোসন এবং নৈবেদ্য সামলানো ছাড়াও জিনিসপত্র মাপা ও ওজন করার কাজও তাঁদেরই করতে হত| 30 প্রতি দিন সকালে ও সন্ধ্যায় তাঁরা প্রভুর প্রশংসা করতেন ও তাঁকে ধন্যবাদ দিতেন| 31 লেবীয়রা প্রভুর কাছে বিশ্রামের দিন, অমাবস্যার দিন ও অন্যান্য উত্সবের দিনগুলিতে হোমবলি উত্সর্গ করতেন| প্রতিদিন তাঁরা প্রভুর সেবা করতেন| প্রতি বার কতজন লেবীয় সেবা করবে সে ব্যাপারে বিশেষ নিয়ম ছিল এবং তাঁরা এই নিয়মগুলি অনুসরণ করতেন| 32 লেবীয়রা তাঁদের আত্মীয়দের, য়ে যাজকরা ছিলেন হারোণের উত্তরপুরুষ প্রভুর মন্দিরে সেবার কাজে সাহায্য করতেন| তাঁরা পবিত্র তাঁবু এবং পবিত্র স্থানেরও যত্ন নিতেন|
1 হারোণের পুত্রদের নাম নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর আর ঈথামর| 2 হারোণের আগেই নাদব আর অবীহূর অপুত্রক অবস্থায় মৃত্যু হয়| তাই ইলিয়াসর এবং ঈথামর যাজকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন| 3 ইলিয়াসর এবং ঈথামরের পরিবারগোষ্ঠীকে দায়ূদ দুটি পৃথক গোষ্ঠীতে ভাগ করেছিলেন যাতে তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে পারেন| দুই পরিবারকে পৃথক করার সময় দায়ূদ ইলিয়াসরের উত্তরপুরুষ সাদোক এবং ঈথামরের উত্তরপুরুষ অহীমেলকের সাহায্য নিয়েছিলেন| 4 ঈথামরের পরিবারের তুলনায় ইলিয়াসরের পরিবার থেকে হওয়া নেতার সংখ্যা বেশি ছিল| ইলিয়াসরের পরিবারের মোট নেতার সংখ্যা ছিল 16 আর ঈথামরের পরিবারের নেতার সংখ্যা ছিল 8| 5 ঘুঁটি চেলে প্রত্যেক পরিবার থেকে নেতা নির্বাচিত করা হত| কিছু লোককে পবিত্র স্থানের দায়িত্বে বেছে নেওয়া হয়েছিল এবং ইলিয়াসর ও ঈথামরের পরিবারগোষ্ঠী থেকে অন্যদের যাজক হিসাবে বাছা হয়েছিল| 6 লেবি পরিবারগোষ্ঠীর নথনেলের পুত্র শময়িয় ছিলেন সচিব| রাজা দায়ূদের সামনে তিনি যাজক সাদোক, অবিযাথরের পুত্র অহীমেলক ও যাজকগণ এবং লেবি পরিবারগোষ্ঠীর নেতাদের নাম লিপিবদ্ধ করেছিলেন| একেকবার অক্ষ নিক্ষেপ করে একেকজনের নাম উঠতো আর শময়িয় তা লিখে নিতেন| এই ভাবে ইলিয়াসর এবং ঈথামর পরিবারের মধ্যে কাজকর্ম ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল| 7 এই ভাবে প্রথম বার উঠেছিল য়িহোযারীব গোষ্ঠীর নাম| দ্বিতীয় বার য়িদযিয গোষ্ঠীর নাম| 8 তৃতীয় বার হারীম গোষ্ঠীর নাম| চতুর্থ বার সিযোরীম গোষ্ঠীর নাম| 9 পঞ্চম বার মল্কিয় গোষ্ঠীর নাম| ষষ্ঠ বার মিয়ামীন গোষ্ঠীর নাম| 10 সপ্তম বার হক্কোষ গোষ্ঠীর নাম| অষ্টম বার অবিয় গোষ্ঠীর নাম| 11 নবম বার য়েশূয় গোষ্ঠীর নাম| দশম বার শখনিয় গোষ্ঠীর নাম| 12 একাদশ বার ইলীয়াশীব গোষ্ঠীর নাম| দ্বাদশ বার যাকীম গোষ্ঠীর নাম| 13 ত্রয়োদশ বার হুপেপর গোষ্ঠীর নাম| চতুর্দশ বার য়েশবাব গোষ্ঠীর নাম| 14 পঞ্চদশ বার বিল্গা গোষ্ঠীর নাম| ষষ্ঠদশ বার ইম্মের গোষ্ঠীর নাম| 15 সপ্তদশ বার হেষীরে গোষ্ঠীর নাম| অষ্টাদশ বার হপিপসেস গোষ্ঠীর নাম| 16 উনবিংশতি বার পথাহিয় গোষ্ঠীর নাম| বিংশতি বার যিহিষ্কেল গোষ্ঠীর নাম| 17 একবিংশতি বার যাখীন গোষ্ঠীর নাম| দ্বাবিংশতি বার গামূল গোষ্ঠীর নাম| 18 ত্রয়োবিংশতি বার দলায় গোষ্ঠীর নাম| আর চতুর্বিংশতি বার উঠল মাসিয় গোষ্ঠীর নাম| 19 এই ভাবে যাদের নাম উঠল তাদের প্রভুর মন্দিরের কাজের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল| হারোণকে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রদত্ত নিয়ম অনুযায়ীএঁদের মন্দিরের কাজ করতে হত| 20 অন্যান্য লেবিদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যাঁরা ছিলেন তাঁদের তালিকা দেওয়া হল:অম্রামের উত্তরপুরুষদের মধ্যে ছিলেন শবূযেল আর শবূযেলের উত্তরপুরুষদের মধ্যে থেকে য়েহদিয়| 21 রহবিয়র বংশধরদের মধ্যে ছিলেন বড় ছেলে যিশিয়| 22 য়িষহরীয় পরিবারগোষ্ঠী থেকে ছিলেন শলোমোত্| আর শলোমোতের পরিবার থেকে যহত্| 23 হিব্রোণের পুত্রদের মধ্যে যথাএমে যিরিয়, অমরিয়, যহসীয়েল এবং যিকমিয়াম| 24 উষীয়েলের পুত্রদের মধ্যে মীখা আর তার পুত্র শামীর| 25 মীখার ভাই যিশিয়র পুত্রদের মধ্যে সখরিয়| 26 মরারির উত্তরপুরুষদের মধ্যে মহলি, মূশি আর যাসিয়| 27 এবং যাসিয়ের পুত্ররা ছিল শোহম, সক্কুর ও ইব্রি| 28 মহলির পুত্র ইলিয়াসরের কোনো পুত্র ছিল না| 29 কীশের পুত্রদের মধ্যে ছিলেন যিরহমেল| 30 আর মূশির পুত্রদের মধ্যে মহলি, এদর আর যিরেমোত্|পরিবার অনুযায়ীএই সমস্ত লেবির নেতাদের নামই নথিভুক্ত আছে| 31 তারা বিশেষ কাজের জন্য মনোনীত হয়েছিল| তারা তাদের আত্মীয় হারোনের উত্তরপুরুষদের যাজকদের মতো ঘুঁটি চালতো| তারা লেবীয়র রাজা দায়ূদ, সাদোক অহীমেলক এবং যাজক ও লেবীয় পরিবারের নেতাদের সামনে ঘুঁটি চেলে ঠিক করতেন য়ে কে কি কাজ করবে| কাজের ভার দেবার সময় বড় পরিবার ও ছোট পরিবারগুলির সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করা হত|
1 দায়ূদ এবং সৈন্যাধ্যক্ষরা আসফের পুত্র হেমন আর যিদূথূনের ঈশ্বরের দৈব্বাণী বীণা, তানপুরা, খোল ও কর্তালের সঙ্গে গানের মাধ্যমে পরিবেশন করার জন্য পৃথক করেছিলেন| এই কাজে যাঁরা নিযুক্ত হয়েছিলেন তাঁদের তালিকা নিম্নরূপ: 2 আসফের পরিবার থেকে এই কাজের জন্য দায়ূদ আসফকে বেছে নিয়েছিলেন| আসফ তাঁর পুত্র সক্কুর, য়োষেফ, নথনিয ও অসারেলকে এই কাজে নেতৃত্ব দিতেন| 3 যিদূথূনের পরিবার থেকে যিদূথূন তাঁর ছয় পুত্র গদলিয়, সরী, শিমিয়ি, যিশায়াহ, হশবিয় ও মত্তিথিয়কে নিয়ে বীণা বাজিযে প্রভুর প্রশংসা করতেন ও প্রভুকে ধন্যবাদ দিতেন| 4 দায়ূদের নিজস্ব ভাব্বাদী হেমনের পুত্রদের মধ্যে ছিলেন বুক্কিয, মত্তনিয়, উষীয়েল, শবূয়েল, যিরীমোত্, হনানিয়, হনানি, ইলীয়াথা, গিদ্দল্তি, রোমাম্তী, এষর, যশ্বকাশা, মল্লোথি, হোথীর, মহসীযোত্ প্রমুখ| 5 ঈশ্বর হেমনকে বলশালী ও বীর্য়বান করেছিলেন| তাঁর চোদ্দ জন পুত্র আর তিনটি কন্যা ছিল| 6 প্রভুর মন্দিরে বীণা, তানপুরা, খোল ও কর্তাল সহ সঙ্গীতে হেমন তাঁর পুত্রদের নেতৃত্ব দিতেন| আর রাজা ছিলেন আসফ, য়িদূথূন এবং হেমনের আদেশকর্ত্তা| দায়ূদ নিজে এদের সবাইকে মনোনীত করেছিলেন| 7 এদের এবং লেবি পরিবারগোষ্ঠী এদের আত্মীয়দের মোট 288 জনকে প্রভুর প্রশংসা করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল| 8 কে কি করবে তার জন্য অক্ষ নিক্ষেপ করা হয়েছিল| এখানে নবীন এবং প্রবীণ, শিক্ষক এবং ছাত্র সকলের সাথে সমান ব্যবহার করা হত| 9 প্রথম বার আসফ (য়োষেফ) এর পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল|দ্বিতীয় বার গদলিয়র পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 10 তৃতীয় বার সক্কুরের পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 11 চতুর্থ বার যিষ্রি পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 12 পঞ্চম বার নথনিয়র পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 13 ষষ্ঠ বার বুক্কিয়র পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 14 সপ্তম বার যিশারেলার পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 15 অষ্টম বার যিশায়াহের পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 16 নবম বার মত্তনিয়র পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 17 দশম বার শিমিয়ির পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল | 18 একাদশ বারে অসরেলের পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 19 দ্বাদশ বারে হশবিয়ের পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 20 ত্রয়োদশ বারে শবূয়েলের পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 21 চতুর্দশ বারে মত্তিথিয়র পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 22 পঞ্চদশ বারে যিরেমোতের পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 23 ষষ্টদশ বারে হনানিয়র পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 24 সপ্তদশ বারে যশ্বকাশার পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 25 অষ্টাদশ বারে হনানির পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 26 উনবিংশতি বারে মল্লোথির পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 27 বিংশতি বারে ইলীয়াথার পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 28 একবিংশতি বারে হোথীর পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 29 দ্বাবিংশতি বারে গিদ্দল্তির পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 30 ত্রয়োবিংশতি বারে মহসীয়োতের পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল| 31 আর চতুর্বিংশতি বারে রোমাম্তি এষরের পরিবার থেকে 12 জন পুত্র এবং আত্মীয়কে বাছা হয়েছিল|
1 দ্বাররক্ষীদের গোষ্ঠীর মধ্যে:আসফের পরিবারগোষ্ঠীর কোরহ পরিবার থেকে ছিলেন কোরহের পুত্র মশেলিমিয় আর তাঁর পুত্ররা| 2 মশেলিমিয়র পুত্রদের নাম যথাএমে সখরিয়, যিদীয়েল, সবদিয়, যত্নীয়েল, 3 এলম, যিহোহানন আর ইলিহৈনয়| 4 ওবেদ-ইদোমের পরিবার থেকে ছিলেন তাঁর পুত্ররা, যথাএমে- শময়িয়, যিহোষাবদ, য়োযাহ, সাখর, নথনেল, 5 অম্মীয়েল, ইষাখর আর পিযূল্লতয়| ওবেদ-ইদোম ঈশ্বরের আশীর্বাদে ধন্য হয়েছিলেন| 6 তাঁর পুত্র শময়িয়র পুত্ররাও ছিলেন বীরযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের নেতা| 7 শময়িয়র পুত্রদের নাম অত্নি, রফায়েল, ওবেদ, ইল্সাবদ, ইলীহূ ও সমথিয়| ইল্সাবদের আত্মীয়রা ছিলেন দক্ষ ও কুশলী কর্মী| 8 ওবেদ-ইদোমের 62 জন উত্তরপুরুষের সকলেই ছিলেন প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তি এবং সুদক্ষ দ্বাররক্ষক| 9 মশেলিমিযর পরিবার থেকেও ছিলেন শক্তিশালী ও সুদক্ষ 18 জন| 10 মরারি পরিবার থেকে ছিলেন হোষার পুত্র শিম্রি| শিম্রি আসলে বড় ছেলে না হলেও তাঁর পিতা তাঁকেই প্রথম জাত সন্তান বলে মনোনীত করেছিলেন| 11 এছাড়া ছিলেন যথাএমে হিল্কিয়, টবলিয, সখরিয়- সব মিলিয়ে মোট 13 জন| 12 এরা হলেন দ্বাররক্ষীদের দলের নেতারা এবং তাঁদের আত্মীয়দের মতোই তাঁরাও প্রভুর মন্দিরে সেবা করতেন| 13 দ্বাররক্ষীদের প্রত্যেক গোষ্ঠীকে একটি নির্দিষ্ট দরজা পাহারা দিতে হত| অক্ষ নিক্ষেপ করে এই দরজা বেছে নেওয়া হত এবং একাজে বড় ও ছোট পরিবারদের সমান গুরুত্ব দেওয়া হত| 14 মশেলিমিযকে বাছা হয়েছিল পূর্ব দিকের দরজা পাহারা দেবার জন্য| এরপর অক্ষ নিক্ষেপ করে উত্তর দিকের দরজার ভার দেওয়া হয় তাঁর পুত্র বিচক্ষণ সখরিয়কে| 15 ওবেদ-ইদোম পান দক্ষিণ দিকের দরজার দায়িত্ব| ওবেদ-ইদোমের পুত্রদের মন্দিরের ধনাগার রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়| 16 শুপপীম আর হোষা পশ্চিম দিকের দরজা এবং উত্তরাপথের শল্লেখত্ ফটক রক্ষার দায়িত্ব পান|এই সমস্ত রক্ষীরা সকলে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকতেন| 17 প্রত্যেক দিন সকালে 6 জন লেবীয় দাঁড়াতেন পূর্বদিকের ফটকে, চার জন দক্ষিণ দিকের ফটকে, চার জন উত্তরের ফটকে, দুজন ধনাগারের সামনে, 18 চার জন পশ্চিমদিকের উঠোনে আর দুজন উঠোনের রাস্তার মুখে| 19 মরারি ও কোরহ গোষ্ঠীর দ্বাররক্ষীরা এইভাবে মন্দিরে পাহারা দিতেন| 20 লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অহিযর দায়িত্ব ছিল ঈশ্বরের মন্দিরের দুর্মূল্য জিনিসপত্র ও কোষাগার আগলে রাখা| 21 গের্শোন বংশের লাদন পরিবারগোষ্ঠীর নেতাদের এক জন ছিলেন য়িহীযেলি| 22 য়িহীযেলির পুত্র সেথম আর তাঁর ভাই য়োয়েলেরও কাজ ছিল প্রভুর মন্দিরের মূল্যবান জিনিসপত্রের ওপর নজর রাখা| 23 এছাড়া অম্রাম, যিষহর, হিব্রোণ আর উষীয়েলের পরিবারগোষ্ঠী থেকে অন্যান্য দলপতিদের বেছে নেওয়া হয়েছিল| 24 প্রভুর মন্দিরের দুর্মূল্য জিনিসপত্র যাঁরা দেখাশোনা করত, গের্শোনের পুত্র মোশির পৌত্র শবূযেল তাঁদের নেতা ছিল| 25 এঁরা ছিলেন শূবয়েলের আত্মীয়রা: ইলিযষেরের থেকে তাঁর আত্মীয়রা ছিলেন: ইলীযষেরের পুত্র রহবিয, রহবিযর পুত্র য়িশাযাহ, য়িশাযাহর পুত্র য়োরাম, য়োরামের পুত্র সিখ্রি আর সিখ্রির পুত্র শলোমোত্| 26 শলোমোত্ আর তাঁর আত্মীয়দের কাজ ছিল দায়ূদ মন্দিরের জন্য য়ে সব জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছেন তার দেখাশোনা করা|সেনাবাহিনীর অধ্যক্ষরাও মন্দিরের জন্য অনেক কিছু দান করেছিলেন| 27 তাঁরা যুদ্ধের সময় য়ে সব জিনিস আহরণ করেছিলেন তাঁর অনেক কিছুই প্রভুর মন্দির বানানোর কাজে দান করেন| 28 শলোমোত্ আর তাঁর আত্মীয়রা ভাব্বাদী শমূযেল, কীশের পুত্র শৌল, নেরের পুত্র অব্নের, সরূযার পুত্র য়োয়াবের দেওয়া পবিত্র ও দুর্মূল্য সম্পদ এবং লোকেরা প্রভুর মন্দিরে য়ে সব জিনিসপত্র দান করতেন এবং তার দেখাশোনা করতেন| 29 য়িষ্হর বংশের কনানিয ও তাঁর পুত্রদের মন্দিরের বাইরে ইস্রায়েলে বিভিন্ন জায়গায় আধিকারিক ও বিচারকের কাজ দেওয়া হয়েছিল| 30 হিব্রোণ বংশের হশবিয আর তাঁর আত্মীয়রা 1,700 জন সৈন্যসহ ইস্রায়েলে যর্দন নদীর ওপারে পশ্চিমদিক পর্য়ন্ত প্রভুর যাবতীয় কাজ এবং রাজার কাজের দায়িত্বে ছিলেন| 31 হিব্রোণ বংশের পারিবারিক ইতিহাস থেকে জানা যায় য়ে য়িরিয ছিলেন এই বংশের নেতা| দায়ূদের রাজত্বের 40 তম বছরে, তিনি লোকদের পারিবারিক ইতিহাস ঘেঁটে শক্তিশালী ও দক্ষ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন| গিলিয়দের যাসেরে বসবাসকারী হিব্রোণ পরিবারের অনেককে এই ভাবে খুঁজে বার করা হয়েছিল| 32 য়িরিযর মোট 2,700 জন শক্তিশালী ও কর্মপটু আত্মীয় ছিলেন, যাঁরা তাঁদের পরিবারের নেতা| রাজা দায়ূদ এই 2,700 জনকে রূবেণ, গাদ ও মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেককে নেতৃত্ব দেবার দায়িত্ব দিলেন, যারা প্রভু ও রাজার কাজে নিযুক্ত ছিলেন|
1 রাজার সৈন্যবাহিনীতে য়ে সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা কাজ করতেন এবারে তার একটা তালিকা দেওয়া যাক| 24,000 সেনার এক একটি দল প্রতি মাসে একটা দল হিসেবে সারা বছর জুড়ে কাজে নিযুক্ত থাকত| এই দলে পরিবারের নেতা থেকে শুরু করে সেনাপতি, সৈন্যাধ্যক্ষ, সাধারণ সান্ত্রী সবাই থাকত| 2 বছরের প্রথম মাসে 24,000 সৈন্যর য়ে দলটি কাজ করত তাদের দায়িত্বে থাকতেন পেরসের উত্তরপুরুষ সব্দীযেলের পুত্র যাশবিযাম| প্রথম মাসে যাশবিযাম সৈন্যাধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করতেন| 3 4 দ্বিতীয় মাসের দলটির দায়িত্বে থাকতেন অহোহর দোদয| তাঁর দলে 24,000 লোক ছিল| 5 তৃতীয় মাসের সেনাপতি ছিলেন নেতৃস্থানীয যাজক যিহোয়াদার পুত্র বনায়| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 6 তাঁকে পরিচালনার কাজে তাঁর পুত্র অম্মীষাবাদ সাহায্য করতেন| বনায় ছিলেন সেই তিরিশ জন বীর যোদ্ধার অন্যতম| 7 চতুর্থ মাসের সেনাপতি ছিলেন য়োয়াবের ভাই অসাহেল| তাঁর পরে তাঁর পুত্র সবদিয় এই দায়িত্ব নিয়েছিলেন| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 8 পঞ্চম মাসের সেনাপতি হিসেবে কাজ করেছিলেন সেরহ পরিবারের শমহূত্| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 9 ষষ্ঠ মাসে সৈন্যদল পরিচালনা করতেন তকোযার ইক্কেশের পুত্র ঈরা| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 10 সপ্তম মাসের দায়িত্বে ছিলেন ইফ্রয়িমের উত্তরপুরুষের পলোনার অধিবাসী হেলস| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 11 অষ্টম মাসের দায়িত্বে ছিলেন হূশাতের অধিবাসী সেরহ পরিবারের সিব্বখয| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 12 নবম মাসের দায়িত্বে ছিলেন অনাথোতের বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর অবীযেষর| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 13 নটোফাতের সেরহ পরিবারের মহরযের দায়িত্ব ছিল দশম মাসের সৈন্যদল পরিচালনা করা| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 14 পিরিযাথোনের ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর বনায় একাদশ মাসে সৈন্যদল পরিচালনা করতেন| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 15 এবং দ্বাদশ মাসে সৈন্যদল পরিচালনা করতেন নটোফাতের অত্নিয়েল পরিবারের হিল্দয| তাঁর দলে 24,000 পুরুষ ছিল| 16 ইস্রায়েলের বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীর নেতারা ছিলেন:রূবেণের বংশে: সিখ্রির পুত্র ইলীযেষর, শিমিযোন বংশে: মাখার পুত্র শফটিয়| 17 লেবির বংশে: কমূযেলের পুত্র হশবিয, হারোণ বংশে: সাদোক| 18 যিহূদার বংশে: ইলীহূ নামে দায়ূদের জনৈক ভাই| ইষাখরের বংশে: মীখায়েলের পুত্র অম্রি| 19 সবূলূনের বংশে: ওবদিযর পুত্র য়িশ্ামাযয, নপ্তালির বংশে: অস্রীযেলের পুত্র য়িরেমোত্| 20 ইফ্রয়িম বংশে: অসযিযের পুত্র হোশেয, পশ্চিম মনঃশিতে: পদাযের পুত্র য়োয়েল| 21 এবং পূর্ব মনঃশিতে: সখরিয়র পুত্র য়িদ্দো, বিন্যামীন বংশে: অব্নেরের পুত্র যাসীযেল এবং 22 দান বংশের নেতা ছিলেন য়িরোহমের পুত্র অসরেল|ইহারাই ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর নেতা ছিল| 23 রাজা দায়ূদ ইস্রায়েলের জনসংখ্যা গণনা করবেন বলে মনস্থির করেছিলেন| কিন্তু ইস্রায়েলের জনসংখ্যা প্রায় গণনার অতীত ছিল কারণ ঈশ্বর বলেছিলেন, মহাকাশের অগণিত নক্ষত্রের মতোই তিনি ইস্রায়েলের জনসংখ্যা বৃদ্ধি করবেন| দায়ূদ কেবলমাত্র 20 বছর বা তার বেশি বয়সের যারা ইস্রায়েলে বাস করত তাদের গণনা করেছিলেন| 24 সরূযার পুত্র য়োয়াবকে দিয়ে তাদের জনসংখ্যা গণনার কাজ শুরু করেছিলেন, কিন্তু তাও শেষ হয়নি| এর ফলে ঈশ্বর লোকদের প্রতি রুদ্ধ হয়েছিলেন; য়ে কারণে ‘রাজা দায়ূদের ইতিহাস’ গ্রন্থে ইস্রায়েলের কোন জনসংখ্যার উল্লেখ করা হয় নি| 25 রাজসম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব য়াঁদের ওপর দেওয়া হয়েছিল তাঁদের তালিকা নিম্নরূপ:অদীযেলের পুত্র অস্মাবত্ ছিলেন রাজার কোষাধ্যক্ষ| গ্রাম, দুর্গ ও ছোট শহরগুলোর কোষাগারের দায়িত্বে ছিলেন উষিযের পুত্র য়োনাথন| 26 কলূবের পুত্র ইষ্রি কৃষকদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন| 27 রামার শিমিযির কাজ ছিল রাজার দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করা| এই সমস্ত ক্ষেত থেকে য়ে দ্রাক্ষারস প্রস্তুুত হত শিফমের সব্দি তার রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি করতেন| 28 গদেরের বাল-হানন পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চলের জলপাই গাছগুলি এবং সুকমোরাগাছগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করতেন| তেলের ভাঁড়ার সামলাতেন য়োযাশ| 29 শারোণের আশেপাশের গবাদি পশুর দায়িত্ব ছিল সিট্রযের ওপর| অদ্লযের পুত্র শাফট ছিলেন সমভূমিতে য়ে সমস্ত গবাদি পশু চরে বেড়ায় তার দায়িত্বে| 30 উট তদারকির দায়িত্ব ছিল ইশ্মায়েলের ওবীলের ওপর| গাধার তদারকিতে ছিলেন মেরোণোথের য়েহদিয| 31 মেষ চরাতেন হাগরের যাসীষ|এই সমস্ত লোকরা ছিলেন নেতা যারা রাজা দায়ূদের সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন| 32 দায়ূদের কাকা য়োনাথন ছিলেন বিচক্ষণ পরামর্শদাতা ও লেখক| হক্মোনির পুত্র য়িহীযেল রাজপুত্রদের দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন| 33 অহীথোফল ছিলেন রাজার মন্ত্রণাদাতা এবং অর্কীয হূশয় ছিলেন রাজার বন্ধু| 34 পরবর্তীকালে মন্ত্রণাদাতা হিসেবে অহীথোফলের জায়গা নিয়েছিলেন বনায়ের পুত্র যিহোয়াদা আর অবিযাথর| সেনাবাহিনীর অধ্যক্ষর দায়িত্বে ছিলেন য়োয়াব|
1 রাজা দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর নেতাদের, সৈন্যদলের সেনাপতিদের, সৈন্যাধ্যক্ষদের, সেনানাযকদের ও সৈনিকদের, বীর যোদ্ধাদের, রাজকর্মচারী, যারা রাজার সম্পত্তি এবং রাজা ও রাজপুত্রের পশুগুলি দেখাশুনা করতেন এবং রাজার গন্যমান্য আধিকারিকদের জেরুশালেমে আসতে নির্দেশ দিলেন| 2 এঁরা সকলে এক জায়গায় জড়ো হবার পর রাজা দায়ূদ উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমার লোকরা ও আমার ভাইরা, আমার মনে বহু দিন ধরে ইচ্ছে ছিল প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটা রাখার মতো একটা জায়গা বানানো| আমি চেয়েছিলাম সেই জায়গাটি হবে ঈশ্বরের পাদুকাদানি|এ কারণে আমি ঈশ্বরের একটা মন্দির বানানোর পরিকল্পনাও করেছিলাম| 3 কিন্তু ঈশ্বর আমায় বললেন, ‘দায়ূদ, তুমি একজন সৈনিক| বহু লোককে তুমি হত্যা করেছ| তুমি কখনোই আমার নামে একটি বাড়ি বানাবে না কারণ তুমি রক্তপাত ঘটিয়েছ|’ 4 “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীকে ইস্রায়েলের 12টি মূল পরিবারগোষ্ঠীকে নেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছিলেন| আর ঐ পরিবারগোষ্ঠী থেকে আমার পিতার পরিবার ও আমাকে বরাবরের মতো ইস্রায়েলে রাজত্ব করার জন্য প্রভু মনোনীত করেছিলেন| 5 প্রভু আমাকে বহুপুত্রক করেছেন এবং তার মধ্যে থেকে আমার পুত্র শলোমনকে তিনি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হিসেবে বেছে নিয়েছেন| কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইস্রায়েল হল প্রভুর রাজত্ব| 6 প্রভু আমাকে বললেন, ‘দায়ূদ, তোমার পুত্র শলোমন আমার মন্দির ও তার সংলগ্ন সব কিছু বানাবে| কেন? কারণ আমি শলোমনকে আমার সন্তান হিসেবে বেছে নিয়েছি এবং আমি হব তার পিতা| 7 শলোমন আমার বিধি এবং আদেশগুলো বর্তমানে মেনে চলে| ও যদি বরাবর তাই করে আমিও তাহলে চিরদিনের মতো শলোমনের রাজত্বের ভিত শক্তিশালী ও দৃঢ় করে তুলব|” 8 দায়ূদ বলল, “এখন, ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এবং ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমি তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি, যত্নসহকারে এবং ভক্তিভরে প্রভুর সমস্ত নীতি-নির্দেশ মেনে চলো| এক মাত্র তাহলেই তোমরা এই ভালো ভূখণ্ডের অধিকারী হতে পারবে এবং এই দেশ চির দিনের মতো তোমাদের উত্তরপুরুষদের হাতে তুলে দিয়ে য়েতে পারবে| 9 “আর তুমি আমার পুত্র শলোমন, তুমিও ঈশ্বরকে পিতা রূপে জানবে| পবিত্র মনে, আনন্দ ও ভক্তিভরে আজীবন ঈশ্বরের সেবা করো| কারণ ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান, তিনি তোমার মনের সমস্ত কথাই জানতে পারেন| তুমি যদি কখনও তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো, তিনি নিশ্চয়ই তোমার ডাকে সাড়া দেবেন| আর যদি কখনও তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও, তিনিও চির দিনের মত তোমায় ত্যাগ করে যাবেন| 10 মনে রেখো, প্রভু বয়ং তাঁর মন্দির বানানোর কাজ তোমার হাতে অর্পণ করেছেন| সুতরাং সবল হও এবং সফলতার সঙ্গে এটি সম্পূর্ণ কর|” 11 এরপর দায়ূদ, তাঁর পুত্র শলোমনের হাতে মন্দির ও তার শৌধ, ভাঁড়ার ঘর, ওপর তলার ঘর, এর ভেতরের ঘর, করুণা আসনের ঘর- এ সবের নকশা তুলে দিলেন| 12 দায়ূদ মন্দিরের, এমনকি মন্দিরের উঠানের, এর চারদিকের ঘরের, মন্দিরে ব্যবহৃত পবিত্র জিনিষপত্র রাখার মত ভাঁড়ার ঘর সব কিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা করেছিলেন| তারপর তিনি এই সব পরিকল্পনা শলোমনকে দেন| 13 তিনি যাজক ও লেবীয়দের কার্য়াবলী সম্পর্কে রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন| তিনি প্রভুর মন্দির তৈরীর সমস্ত কাজ সম্পর্কে এবং ঈশ্বরের সেবায যত জিনিষ ব্যবহৃত হয় সব কিছু সম্পর্কেও নির্দেশ দিলেন| 14 এছাড়াও তিনি শলোমনকে মন্দির সেবার জন্য রয়োজনীয় জিনিষপত্র বানাতে কি পরিমাণ সোনা এবং রূপো লাগবে তা বোঝালেন| সোনার বাতি ও সোনার বাতিদান, রূপোর বাতি ও রূপোর বাতিদান এবং বিভিন্ন বাতিদানগুলি তাদের ব্যবহার অনুযায়ীকোথায় থাকবে তাও পরিকল্পনা করা ছিল| 15 16 দায়ূদ বললেন, “পবিত্র রুটি রাখার জন্য কত সোনার প্রয়োজন হবে| রূপোর টেবিলের জন্য কতটা রূপো লাগবে| 17 কাঁটাচামচ ও বাসনপত্রের ও কলসের জন্য কি পরিমাণ খাঁটি সোনা দরকার| 18 এবং কলম তৈরীর জন্য কতটা খাঁটি সোনা ব্যবহৃত হবে, প্রতিটি সোনার পাত্রের জন্য কতটা সোনা এবং প্রতিটি রূপোর পাত্রের জন্য কতটা রূপো ব্যবহৃত হবে, যেখানে ধুপ রাখা হবে সেই বেদীটি বানাতে কতটা সোনা দরকার, এসবই দায়ূদ শলোমনকে ভাল করে বুঝিযে দিলেন এবং প্রভুর রথ, করুণা আসনএবং সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর ডানা ছড়িয়ে রাখা সোনার করুব দূতদের জন্য তিনি যত নকশা ও পরিকল্পনা করেছিলেন সে সমস্তই শলোমনকে দিলেন| 19 দায়ূদ বললেন, “এসব প্রভুর আদেশে আমিই লিপিবদ্ধ করেছি| প্রভু আমাকে এই সমস্ত নকশার সব কিছু ভাল করে বুঝতে ও করতে সাহায্য করেছিলেন|” 20 এছাড়াও দায়ূদ তাঁর পুত্র শলোমনকে বললেন, “ভয় পেও না| বুকে সাহস নিয়ে বীরের মতো এই কাজ শেষ করো| আমার প্রভু ঈশ্বর একাজে তোমার সহায় হবেন| কাজ শেষ না হওয়া পর্য়ন্ত তিনি বয়ং তোমার পাশে পাশে থাকবেন, তোমাকে ছেড়ে যাবেন না| তুমি অবশ্যই প্রভুর মন্দির বানাতে পারবে| 21 যাজক ও লেবীয়রা ছাড়াও সমস্ত দক্ষ কারিগররা ঈশ্বরের মন্দির বানাতে তোমাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত হয়ে আছে| রাজকর্মচারী ও লোকরাও তোমার সমস্ত নির্দেশ মেনে চলবে|”
1 ইস্রায়েলের য়ে সমস্ত লোক একসঙ্গে জড়ো হয়েছিল রাজা দায়ূদ তাদের বললেন, “ঈশ্বর যদিও আমার পুত্র শলোমনকে বেছে নিয়েছেন, ও এখনও তরুণ| এই কাজের মতো য়থোপযুক্ত অভিজ্ঞতা বা বিচারবুদ্ধি ওর হয়নি| তবে এই কাজটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটা কোনো মানুষের বসতি বাড়ি তৈরির ব্যাপার নয়| এটা বয়ং প্রভু ঈশ্বরের জন্য| 2 আমি আমার প্রভুর মন্দির বানানোর উপাদান প্রস্তুত করার জন্য আমার যথাসাধ্য করেছি| সোনার জিনিসের জন্য সোনা, রূপোর জিনিষের জন্য রূপো দিয়েছি| আমি পিতলের জিনিষপত্রের জন্য পিতল দিয়েছি| লোহা আর কাঠের জিনিসের জন্য আমি লোহা আর কাঠ দিয়েছি| তাছাড়াও গোমেদক মনিত, তেজস্বী পাথর, শ্বেত পাথর, নানা রঙের দুর্মূল্য পাথর ও অনেক কিছুই প্রভুর মন্দির বানানোর জন্য দিয়েছি| 3 ঈশ্বরের মন্দির যাতে সত্যি সত্যিই ভাল ভাবে বানানো হয় সে জন্য আমি আরো বেশ কিছু পরিমাণ সোনা ও রূপো উপহার হিসেবে দিচ্ছি| 4 ওফীর থেকে 110 টন খাঁটি সোনা ছাড়াও আমি মন্দিরের দেওয়াল মুড়ে দেবার জন্য 260 টন খাঁটি রূপো এই কাজের জন্য দান করছি| 5 এই সব সোনা ও রূপো দিয়ে যাতে দক্ষ কারিগররা এবং যারা স্বেচ্ছাসেবক হবে প্রভুর কাছে মন্দিরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র বানাতে পারে সে জন্যই আমি এই সমস্ত কিছু দিলাম|” 6 ইস্রায়েলের কিছু পরিবারগোষ্ঠীর নেতারা, সৈন্যাধ্যক্ষ, সেনাপতি, সেনানাযক থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা সকলেই স্বেচ্ছায আধিকারিকদের সঙ্গে রাজার এই পরিকল্পনায কাজ করতে এগিয়ে এলেন| 7 তাঁরা ঈশ্বরের গৃহে সব মিলিয়ে 190 টন সোনা, 375 টন রূপো, 675 টন পিতল, 3,750 টন লোহা তো দান করলেনই, 8 উপরন্তু যাদের কাছে দামী ও দুর্মূল্য পাথর ছিল তাঁরা সেগুলিও দান করলেন| গের্শোন পরিবারের য়িহীযেল এই সমস্ত দামী পাথরের দায়িত্ব নিলেন| 9 লোকরা সকলেই খুব উত্ফুল্ল ছিল য়েহেতু তাদের নেতারা খুশি মনে এই সমস্ত দান করছিলেন| রাজা দায়ূদও খুবই আনন্দিত হলেন| 10 রাজা দায়ূদ তারপর সমবেত লোকদের সামনে প্রভুর প্রশংসা করে বললেন:“প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, হে আমাদের পিতা, যুগে যুগে, আবহমান কাল য়েন তোমারই বন্দনা হয়! 11 যা কিছু সত্য, শক্তি, মহিমা, বিজয় ও সন্মান, এসবই তো তোমার, কারণ এই পৃথিবী ও আকাশ- এই মহাবিশ্বের সব কিছুই তোমার| হে প্রভু, এই রাজত্বও তোমার| তুমিই শীর্ষস্থানীয| সব কিছুর শাসক, সবেরই নিযামক| 12 সম্পদ ও সম্মান, তোমার কাছ থেকেই আসে| তুমি সব কিছু শাসন কর| ক্ষমতা ও শক্তি তোমার হাতে রযেছে| এক মাত্র তুমিই আর কাউকে মহান ও শক্তিশালী করতে পার| 13 হে আমাদের ঈশ্বর, তোমাকে ধন্যবাদ, আমরা সকলে তোমারই মহান নাম বন্দনা করি| 14 আমরা যা কিছু দান করেছি প্রকৃতপক্ষে সেসব আমার বা আমার লোকদের কাছ থেকে আসেনি| সে সব তোমার কাছ থেকেই এসেছে| আমরা তোমায় তাই দিচ্ছি যা আমরা তোমার হাত থেকেই পেয়েছি| 15 আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষের মতোই এই পৃথিবীতে শুধুই পথিক, আমাদের জীবন এই পৃথিবীতে ক্ষণিকের ছায়া মাত্র ও আশাবিহীন| 16 হে আমাদের প্রভু, তোমার নামকে সম্মানিত করবার জন্য, তোমার মন্দির তৈরী করবার জন্য আমরা যা কিছু সংগ্রহ করেছি তার সবই তোমার কাছ থেকেই এসেছে| এ সমস্ত তোমারই| 17 আমার ঈশ্বর, আমি জানি তুমি মানুষের পরীক্ষা নাও আর যখন কেউ ভাল কিছু করে তুমি আনন্দিত হও| আমার অন্তঃকরণ থেকে এই সমস্ত কিছু আমি তোমায় দান করলাম| আমি দেখতে পাচ্ছি, তোমার ভক্তরা সবাই আজ এখানে জড়ো হয়েছে আর তোমাকে এইসব কিছু দেওয়া হচ্ছে বলে, তারা সকলেই খুবই আনন্দিত| 18 প্রভু, তুমি আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইসহাক আর ইস্রায়েলের ঈশ্বর| তোমার ভক্তদের সঠিক পরিকল্পনায সাহায্য করো| তোমার প্রতি তাদের ভক্তি ও বিশ্বাস অক্ষুণ্ন রাখতেও সাহায্য করো! 19 আর আমার পুত্র শলোমনেরও যাতে তোমার প্রতি অটুট ভক্তি থাকে, তোমার বিধি ও নির্দেশ যাতে মেনে চলতে পারে তা তুমি দেখো| আমি য়ে রাজধানীর পরিকল্পনা করেছি তা বানাতে তুমি শলোমনকে সাহায্য করো|” 20 তারপর দায়ূদ সমবেত সমস্ত ধরণের লোকদের উদ্দেশ্য করে বললেন, “এবার তোমরা সকলে মিলে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের প্রশংসা করো|” তখন সমবেত লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন| মাটিতে মাথা নত করে তারা সকলে প্রভু ও রাজার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলো| 21 পরের দিন লোকরা প্রভুর উদ্দেশ্যে পেয় নৈবেদ্যসহ 1,000 ষাঁড়, 1,000 মেষ ও 1,000 মেষশাবক বলিদান করল এবং হোমবলি উত্সর্গ করল| এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকেদের উত্সবে খাওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করল| 22 প্রভুর সামনে বসে পানাহার করতে করতে সেদিন সকলে উল্লসিত হয়ে উঠেছিল|এরপর সকলে মিলে সেখানেই পবিত্র তেল ছিটিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য শলোমনকে রাজপদে ও সাদোককে যাজকের পদে অভিষিক্ত করল| 23 তারপর শলোমন রাজা হয়ে তাঁর পিতার জায়গায় প্রভুর সিংহাসনে বসলেন| শলোমন জীবনে খুবই সফল হয়েছিলেন| ইস্রায়েলের সকলেই শলোমনকে মান্য করতেন| 24 সমস্ত নেতা, সৈনিক, দায়ূদের অন্যান্য পুত্ররাও তাঁকে রাজা হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন এবং তাঁর আজ্ঞাধীন ছিলেন| 25 প্রভু শলোমনকে অত্যন্ত মহত্ ও শক্তিশালীও করেছিলেন আর ইস্রায়েলের সমস্ত লোক একথা জানতেন| প্রভু শলোমনকে এক জন রাজার যথাযোগ্য মর্য়াদা দিয়েছিলেন যা তাঁর আগে ইস্রায়েলের অন্য কোন রাজাই পাননি| 26 য়িশযের পুত্র দায়ূদ 40 বছর ইস্রায়েলে রাজত্ব করেছিলেন| তিনি হিব্রোণে সাত বছর এবং জেরুশালেমে 33 বছর রাজত্ব করেন| 27 28 ভাল ও দীর্ঘ জীবনযাপন করার পর বার্ধক্যের কারণে দায়ূদের মৃত্যু হয়| তিনি জীবনে বহু সম্পত্তি ও খ্যাতি লাভ করেছিলেন| তাঁর পরে তাঁর পুত্র শলোমন নতুন রাজা হলেন| 29 রাজা দায়ূদ আজীবন য়ে সমস্ত কাজ করেছিলেন তা ভাব্বাদী শমূযেল, ভাব্বাদী নাথন ও ভাব্বাদী গাদের লেখা পুস্তকে বর্ণিত হয়েছে| 30 এই সমস্ত পুস্তকে ইস্রায়েলের রাজা হিসেবে তিনি যা কিছু কাজ করেছিলেন সে সবেরই উল্লেখ আছে| এই সমস্ত লেখকরা ইস্রায়েল ও তার প্রতিবেশী রাজ্যের ব্বিরণ এবং দায়ূদের ক্ষমতা শক্তি ও তাঁর জীবনের সমস্ত ঘটনা লিখে গিয়েছেন|
1 প্রভু তাঁর ঈশ্বর সহায় থাকায় শলোমন রাজা হিসেবে খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন, প্রভু তাঁকে অতুল সম্পদ ও ক্ষমতার অধীশ্বর করেছিলেন| 2 শলোমন ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর সেনাপতি থেকে শুরু করে বিচারক এবং পরিবারসমূহের কর্ত্তাগণ, সকলের সঙ্গে কথা বললেন| 3 শলোমন সহ তাঁরা সবাই গিবিয়োনের উচ্চ স্থানে জড়ো হলেন যেখানে ঈশ্বরের সমাগম তাঁবু ছিল|প্রভুর অনুগত দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকেরা যখন মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, সে সমযে তাঁরা এই তাঁবুর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন| 4 এখন দায়ূদ কিরিযত্-য়িযারীম থেকে ঈশ্বরের সাক্ষ্যসিন্দুকটি জেরুশালেমে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এটা রাখার জন্য সেখানে একটা বিশেষ তাঁবু বানিয়েছিলেন| 5 ঊরির পুত্র বত্সলেল একটি পিতলের বেদী বানিয়েছিলেন| সেটা গিবিয়োনের এই পবিত্র তাঁবুর সামনে রাখা হয়েছিল| এ কারণে শলোমন ও লোকরা সেখানে প্রভুর পরামর্শ ও উপদেশ নিতে গিয়েছিলেন| 6 শলোমন সমাগম তাঁবুর সামনে পিতলের বেদীর ওপর গেলেন, যেটি প্রভুর সামনে ছিল এবং সেই বেদীর ওপরে 1,000 হোমবলি উত্সর্গ করলেন| 7 সেই রাতে ঈশ্বর শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “শলোমন তুমি আমার কাছে যা চাও প্রার্থনা করো|” 8 শলোমন ঈশ্বরকে বললেন, “হে প্রভু, আমার পিতা দাযূদের প্রতি আপনি আপনার অসীম করুণা বর্ষন করেছিলেন| তাঁর জায়গায় আপনি বয়ং আমাকে নতুন রাজা হিসেবে বেছে নিয়েছেন| 9 প্রভু ঈশ্বর, আপনি তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমাকে সুবিশাল সাম্রাজ্যের রাজা করবেন| এখন আপনি সেই প্রতিশ্রুতি রাখুন! আকাশের সহস্র তারার মত পৃথিবীর অগনিত লোক এখন আমার আজ্ঞাধীন| 10 আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে এই সমস্ত লোকদের সঠিক পথে পরিচালনা করবার মতো বুদ্ধি ও জ্ঞান দিন| আপনার কৃপা ছাড়া কারো পক্ষেই এই সমস্ত লোকদের শাসন করা সম্ভব নয়|” 11 ঈশ্বর শলোমনকে বললেন, “তুমি সঠিক উত্তরটি দিয়েছ; যাদের আমি মনোনীত করেছি, আমার সেই লোকদের নেতৃত্ব দেবার ও শাসন করবার জন্য তুমি জ্ঞান ও বুদ্ধি চেয়েছ, বিষয সম্পত্তি, ধন ও সম্মান, তোমার শএুদের মৃত্যু এমনকি দীর্ঘ জীবনও চাওনি| 12 তাই আমি তোমাকে জ্ঞান ও বুদ্ধি তো দেবই উপরন্তু তোমায় ধনসম্পদ, খ্যাতি ও প্রতিপত্তি, নাময়শ এসবই দেবো| তুমি যা পাবে এখনো পর্য়ন্ত কোনো রাজাই তা পায়নি এবং ভবিষ্যতেও পাবে না|” 13 শলোমন তারপর গিবিয়োনের উপাসনাস্থানে গেলেন এবং সমাগম তাঁবু থেকে আবার ইস্রাযেল শাসন করার জন্য জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 14 এরপর শলোমন তাঁর সেনাবাহিনীর জন্য ঘোড়া ও রথ সংগ্রহ করতে শুরু করলেন| শলোমন 1,400 রথ এবং 12,000 অশ্বারোহী সারথী সংগ্রহের পর এইসব রথ রাখার জন্য যে বিশেষ শহরগুলি বানিয়েছিলেন সেখানে পাঠিয়ে দিলেন| কিছু রথ ও অশ্বারোহী সেনা জেরুশালেমে তাঁর প্রাসাদেও রেখে দিলেন| 15 শলোমন জেরুশালেমে সোনা এবং রূপাকে পাথরের মতো সাধারণ করে তুলেছিলেন| তিনি সাধারণ সুকমোর গাছপালার মতোই তাঁর রাজত্বের পশ্চিমের পাহাড়গুলিতে বিরল এরস গাছ লাগিয়েছিলেন| 16 শলোমনের ঘোড়াগুলি মিশর এবং কুযে থেকে আনা হয়েছিল| তাঁর বণিকরা সেগুলি কুযে থেকে কিনেছিল| 17 এই সমস্ত বণিকরা 600 শেকল রূপোর বিনিময়ে একটি রথ ও 150 শেকল রূপোর বিনিময়ে একটা ঘোড়া কিনত| সমস্ত হিত্তীয় ও অরামীয় রাজারা এইসব বণিকদের মারফত তাঁদের ঘোড়া ও রথগুলি কিনেছিলেন|
1 প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার জন্য শলোমন একটি মন্দির ও নিজের জন্য একটি রাজপ্রাসাদ বানানোর পরিকল্পনা করেন| 2 এই কাজের জন্য তিনি 70,000 শ্রমিক, 80,000 পাথর কাটা মিস্ত্রী ও এদের কাজের তদারকির জন্য 3,600 জন তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করেছিলেন| 3 এরপর শলোমন সোরের রাজা হূরমের কাছে অনুরোধ করে পাঠালেন, “আমার পিতা দায়ূদকে যেভাবে সাহায্য করেছিলেন, আপনাকে আমায় সেভাবেই সাহায্য করতে হবে| আপনি এরস কাঠ পাঠিয়েছিলেন, যাতে আমার পিতা তাঁর নিজের জন্য একটি বাসয়োগ্য বাড়ী তৈরী করতে পারেন| 4 এখন আমি আমার প্রভু, ঈশ্বরের নামে একটা মন্দির বানিয়ে তাঁকে উত্সর্গ করতে চলেছি যাতে সেই মন্দিরে প্রভুর সামনে আমরা সুমিষ্টগন্ধী ধুপধূনো জ্বালাতে পারি এবং নিয়মিতভাবে সেই বিশেষ টেবিলে পবিত্র রুটিনৈবেদ্য দিতে পারি| প্রতি সকাল-সন্ধ্যা, বিশ্রামের দিন ও অমাবস্যায এবং প্রভু আমাদের ঈশ্বরের নির্দেশিত উত্সবের দিন হোমবলি উত্সর্গ করা হবে| ঠিক হয়েছে, ইস্রায়েলের লোকরা চিরকাল এই এযিা-কর্ম চালিযে যাবে| 5 “যেহেতু আমাদের ঈশ্বর অন্যান্য দেবতা থেকে মহান তাই আমি তাঁর উদ্দেশ্যে একটা বিশাল মন্দির বানাতে চাই| 6 কারো পক্ষেই কোনো ঘর বাড়ী বানিয়ে সেখানে আমাদের ঈশ্বরকে রাখা সম্ভব নয়| এমনকি স্বর্গ এবং স্বর্গের স্বর্গও ঈশ্বরকে ধরে রাখতে পারে না| সুতরাং, আমি ক্ষুদ্র মানুষ, ঈশ্বরের মন্দির আর কি করে বানাবো? আমি শুধুমাত্র তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ধুপধূনো দেবার মতো একটা জায়গা বানাতে পারি| 7 “আমি চাই আপনি আমাকে সোনা, রূপো, পিতল ও লোহার কাজ জানা একজন দক্ষ কারিগর পাঠান যে বেগুনী, লাল এবং নীল রঙের সূক্ষ্ম কাপড় দিয়েও কাজ করতে জানে| সে এখানে যিহূদা এবং জেরুশালেমে আমার পিতার বেছে রাখা কারিগরদের সঙ্গে কাজ করবে| 8 এছাড়াও, আপনাকে আমায় লিবানোন থেকে শক্ত ও দামী দামী কিছু গাছের গুঁড়ি পাঠাতে হবে| আমি জানি আপনার কর্মচারীরা লিবানোন থেকে গাছ কাটার ব্যাপারে অভিজ্ঞ| আমার কর্মচারীরাও তাদের সঙ্গে গিয়ে হাত লাগাবে| 9 আমি মন্দিরটা খুব বড় আর সুন্দর করে বানাতে চাই এবং সে কারণে আমার বহু পরিমাণ কাঠ লাগবে| 10 তাদের কাজের মজুরি হিসেবে আমি আপনার কর্মচারীদের 1,25,000 বুশেল গমের আটা, 1,25,000 বুশেল যব, 1,15,000 গ্যালন দ্রাক্ষারস এবং 1,15,000 গ্যালন তেল দেবো|” 11 হূরম শলোমনকে বলে পাঠালেন, “শলোমন প্রভু তাঁর লোকদের ভালোবাসেন বলেই তিনি তোমাকে তাদের রাজা করেছেন| 12 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা কীর্ত্তিত হোক যিনি স্বর্গ ও পৃথিবী বানিয়েছেন এবং রাজা দায়ূদকে একটি সুসন্তান দিয়েছেন| শলোমন তোমার প্রজ্ঞা ও বোধ আছে এবং তুমি প্রভুর জন্য একটি মন্দির আর তোমার নিজের জন্য একটি প্রাসাদ তৈরী করছ| 13 আমি তোমার কাছে হূরম আবি নামে একজন দক্ষ কারিগর পাঠাবো| 14 হূরমের মাতা ছিলেন দান গোষ্ঠীর থেকে আর পিতা ছিলেন সোর থেকে| হূরম আবি সোনা, রূপো, পিতল, লোহা এবং কাঠের একজন দক্ষ কারিগর| এছাড়াও দামী বেগুনী, লাল ও নীল রঙের কাপড়েরও সে একজন দক্ষ কারিগর| তোমার নির্দেশ মতো সবকিছুই ও বানাতে পারবে| তোমার পিতা রাজা দাযূদের বাছাই করা কারিগরদের সঙ্গে গিয়ে কাজ করবে| 15 “এখন, হে রাজন, তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি মত আমার কর্মচারীদের গম, যব, তেল ও দ্রাক্ষারস দিও| 16 লিবানোন থেকে তোমার যতটা পরিমাণ কাঠ লাগবে সেগুলি আমরা কাটব এবং সেগুলি ভেলায করে সমুদ্র পথে যাফোতে পাঠিয়ে দেবো| সেখান থেকেই তুমি সেগুলো জেরুশালেমে নিয়ে যেতে পারো|” 17 এরপর, শলোমন তাঁর পিতা দায়ূদ যেভাবে লোক গণনা করেছিলেন সেভাবে ইস্রায়েলে কতজন বিদেশী বাস করে তা জানবার জন্য গণনা করলেন| বিদেশী জনসংখ্যা ছিল 1,53,600 জন| 18 এর মধ্যে শলোমন ভার বইবার জন্য 70,000 লোক আর পর্বতের ওপর পাথর কাটার জন্য 80,000 লোককে বেছে নিয়েছিলেন| আর এইসব কাজকর্ম তদারকি করার জন্য 3,600 জনকে বাছলেন|
1 জেরুশালেমের মোরিযা পর্বতের ওপর শলোমন প্রভুর মন্দির বানানোর কাজ শুরু করলেন| এইটি সেই জায়গা যেখানে প্রভু, শলোমনের পিতা, রাজা দাযূদের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং সেটি ছিল যিবূষীয় অর্ণানের শস্য মাড়াইযের খামার| 2 শলোমন তাঁর রাজত্বের চতুর্থ বছরের দ্বিতীয় মাসে মন্দির বানানোর কাজ শুরু করেন| 3 ঈশ্বরের মন্দিরের ভিতের দৈর্য়্ঘ ছিল 60 হাত আর প্রস্থ 20 হাত| 4 মন্দিরের সামনের গাড়ি বারান্দাটি উচ্চতায় ও দৈর্য়্ঘে ছিল 20 হাত| ভেতরের দিকের চত্বরটি শলোমন আগাগোড়া সোনায মুড়ে দিয়েছিলেন| 5 তিনি মন্দিরের বড় ঘরের দেওয়ালে দেবদারু কাঠের আস্তরণ দিয়ে তার ওপরে সোনার আস্তরণ দিয়েছিলেন| সেই সব দেওয়ালে তালগাছ আর শিকলের ছবি খোদাই করা ছিল| 6 মন্দিরটিকে আরো সুন্দর দেখাবার জন্য শলোমন বহু মূল্যবান পাথর দিয়ে সাজিযেছিলেন এবং তিনি পর্বযিমের সোনা ব্যবহার করেছিলেন| 7 মন্দিরের কড়িকাঠগুলি, দরজার কাঠামোগুলি, দরজাগুলি এবং মন্দিরের দেওয়ালগুলি তিনি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন এবং দেওয়ালের ওপর তিনি করূব দূতদের প্রতিকৃতি খোদাই করেছিলেন| 8 শলোমন মন্দিরের পবিত্রতম স্থানটিও নির্মাণ করেছিলেন| পবিত্রতম স্থানটি দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থে ছিল 20 হাত| অর্থাত্ পবিত্রতম স্থানের মাপ আর মন্দিরের প্রস্থের মাপ ছিল এক| পবিত্রতম স্থানের দেওয়ালও 23 টন সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়| 9 এক একটা সোনার পেরেকের ওজন ছিল 1 1,4 পাউণ্ড| মন্দিরের ওপর ঘরগুলোও শলোমন সোনা দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন| 10 পবিত্রতম স্থানে রাখবার জন্য তিনি দুটি করূব দূতের মূর্ত্তি খোদাই করেছিলেন এবং সেগুলো সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন| 11 এই করূব দূতদের এক একটা ডানার দৈর্য়্ঘ ছিল প্রায 5 হাত অর্থাত্ ডানার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্য়ন্ত মোট দৈর্য়্ঘ ছিল প্রায 20 হাত| 12 করূব দূতের মূর্ত্তি দুটো এমনভাবে বসানো হয়েছিল যাতে মাঝামাঝি জায়গায় এদের একজনের ডানার সঙ্গে অন্যজনের ডানা ছুঁযে থাকে| 13 তাদের ডানাগুলি ছড়িয়ে দিয়ে তারা 20 হাত জায়গা ঢেকে দিয়েছিল এবং তাদের পাযের ওপর এমনভাবে দাঁড়িয়েছিল যে মনে হচ্ছিল যেন তারা ঘরের ভেতরের দিকে চেয়ে আছে| 14 নীল, বেগুনী এবং লাল রঙের কাপড় দিয়ে শলোমন পর্দাসমূহ বানিয়েছিলেন এবং সেগুলোর ওপর সূচীশিল্প দিয়ে করূব দূতও বানিয়েছিলেন| 15 মন্দিরের সামনে প্রায 35 হাত দীর্ঘ দুটি স্তম্ভ বানানো হয়েছিল| এই দুটি স্তম্ভের ওপরের অংশ দুটো ছিল 5 হাত দীর্ঘ| 16 তিনি শেকলের মত মালা তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলো স্তম্ভ দুটির মাথায় রেখেছিলেন| এর পরে তিনি এক শত ডালিম তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলো মালায স্থাপন করেছিলেন| তারপর তিনি 100 টি ডালিম তৈরী করে সেই মালায বসিযে দিয়েছিলেন| মন্দিরের সামনে ডানদিকে যে স্তম্ভটা বসানো হয়েছিল শলোমন তার নাম দিয়েছিলেন “যাখীন” এবং বাঁদিকের স্তম্ভটার নাম দেওয়া হয় “বোযস|” 17
1 শলোমন পিতল দিয়ে মন্দিরের বর্গাকৃতি বেদীটি বানিয়েছিলেন| দৈর্য়্ঘ ও প্রস্থে এটি ছিল 20 হাত এবং উচ্চতায় 10 হাত| 2 গলানো পিতল দিয়ে মন্দিরের সুবিশাল গোলাকার জলের চৌবাচচাটি ঢালাই করা হয়েছিল| এই জলাধারের ব্যাস ছিল 10 হাত, পরিধি 30 হাত এবং উচ্চতা প্রায 5 হাত| 3 পিতলের তৈরী জলাধারটির নীচে সমস্ত বৃত্তটিকে ঘিরে দুটো সারিতে 10 হাত ষাঁড়ের প্রতিকৃতি রাখা ছিল| ষাঁড়গুলি এবং চৌবাচচাটি ছিল একটি খণ্ডে ঢালাই করা| 4 চৌবাচচাটি বারোটি ষাঁড়ের মূর্ত্তির ওপরে বসানো ছিল, যার মধ্যে তিনটে ষাঁড় ছিল উত্তরমুখী, তিনটে পশ্চিমমুখী, তিনটে দক্ষিণমুখী এবং তিনটে পূর্বমুখী| চৌবাচচাটি সেগুলোর মাথায় বসানো ছিল যাদের শরীরের পিছন দিকগুলো ছিল কেন্দরের দিক| 5 এই জলাধারের পরিধি দেওয়াল ছিল 3 ইঞ্চি পুরু এবং জলাধারের কানাটা ফুলকাটা পেয়ালার মতো করা ছিল| এটি প্রায 17,500 গ্যালন জল ধারণ করতে পারত| 6 পিতলের জলাধারের বাঁ পাশে ও ডান পাশে পাঁচটি করে মোট দশটি গামলা তৈরী করেছিলেন| সেখানে হোমবলি নিবেদনের জিনিসপত্র ধোযা হতো| আর বড় জলাধারের জল যাজকরা উত্সর্গের আগে ধোযাধুযির কাজে ব্যবহার করতেন| 7 দাযূদের পরিকল্পনা অনুযাযী, শলোমন 10 টা বাতিদান বানালেন এবং তার মধ্যে পাঁচটিকে মন্দিরের উত্তরদিকে এবং পাঁচটিকে দক্ষিণ দিকে সাজিযে রেখেছিলেন| 8 একই ভাবে তিনি 10 টি টেবিলও বানিয়ে মন্দিরের মধ্যে রাখেন| মন্দিরের জন্য 100 টি বেসিন বা হাত ধোওযার জায়গা সোনা দিয়ে বানানো হয়েছিল| 9 এছাড়াও, শলোমন যাজকদের জন্য উঠোন, একটি বিরাট প্রাঙ্গণ এবং উঠোনের দরজাসমূহও বানিয়েছিলেন| এই দরজাগুলো পিতল মুড়ে দেওয়া হয়েছিল| 10 এসব শেষ হলে শলোমন বড় জলাধারটিকে মন্দিরের ডানদিকে দক্ষিণ পূর্বদিকে বসিযে দিয়েছিলেন| 11 হূরম পাত্র, বেলচা এবং গামলাসমূহ বানিয়েছিলেন| এইভাবে শলোমনের জন্য যে সমস্ত কাজ হাতে নিয়েছিলেন সে সমস্ত কাজ তিনি শেষ করেন| বাটির আকারের গম্বুজসহ স্তম্ভ দুটি, স্তম্ভের ওপর বাটি আকারের গম্বুজগুলিকে সাজাবার জন্য দুটি জাফরি; 400টি ছোট ছোট ডালিম; প্রত্যেকটি জাফরিতে এই ছোট ছোট ডালিমগুলি দুটি সারিতে সাজানো ছিল; ষাঁড়গুলির পিঠে পিতলের বড় চৌবাচচাটি; সমস্ত পাত্রগুলি, বেলচাসমূহ, কাঁটাগুলি এবং এগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য যন্ত্রপাতি| রাজা শলোমনের জন্য হূরম আবি এই সবই তৈরী করেছিলেন| প্রভুর মন্দিরে ব্যবহার য়োগ্য পালিশ করা পিতল দিয়ে তৈরী করেছিলেন| 12 13 14 15 16 17 রাজা প্রথমে এই জিনিষগুলিকে মাটির ছাঁচে ফেলেছিলেন| মাটির ছাঁচ তৈরী হত যর্দন উপত্যকায সুক্কোত্ ও সরেদার মধ্যবর্তী অঞ্চলে| 18 শলোমনের তৈরী পিতলের জিনিষগুলো এত বেশি ছিল যে কতখানি পিতল ব্যবহার করা হয়েছিল কেউ তার পরিমাপ করবার চেষ্টা করেনি| তিনি নিথলিখিত জিনিষগুলিও তৈরী করেছিলেন: ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য একটা সোনার বেদী, ঈশ্বরের অস্তিত্বের পবিত্র রুটি রাখার জন্য টেবিল, 10টি খাঁটি সোনার বাতিদান এবং সেগুলোর বাতি যেগুলো ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে অভ্য়ন্তরস্থ পবিত্র স্থানে পোড়াবার কথা ছিল, ফুলগুলি, খাঁটি সোনার বাতি ও চিম্টেগুলি; কর্ত্তারিসমূহ, গামলাগুলি, ধুপপাত্রগুলি, এবং খাঁটি সোনার উনুন, অভ্য়ন্তর গৃহের দরজা, পবিত্রতম স্থানের দরজাগুলি এবং মন্দিরের খাঁটি সোনার দরজাগুলি| 19 20 21 22
1 প্রভুর মন্দিরের সমস্ত কাজ শেষ হবার পর শলোমন, তাঁর পিতা দায়ূদ মন্দিরের জন্য যেসব সোনা রূপোর জিনিষ ও আসবাবপত্র দান করেছিলেন সেগুলি নিয়ে এসে কোষাগারে রাখলেন| 2 শলোমন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবার গোষ্ঠীসমূহের নেতাদের জেরুশালেমে জড়ো হবার আদেশ দিলেন| তাদের উপস্থিতিতে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি দাযূদের শহর যাকে সিযোন বলা হয়, সেখান থেকে মন্দিরে আনবার আদেশ দিলেন| 3 নির্দেশ মতো ইস্রায়েলের সমস্ত ব্যক্তি সপ্তম মাসে (অধুনা সেপেটম্বরে) কুটিরবাস পর্বের সময় রাজা শলোমনের সামনে উপস্থিত হলেন| 4 যখন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিরা সেখানে এসে পৌঁছলেন, লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুকটি তুলে নিলেন এবং 5 সমাগম তাঁবুটিকে এবং তার ভেতরের সমস্ত পবিত্র জিনিস জেরুশালেম পর্য়ন্ত ওপরে বয়ে আনলেন| 6 রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে উপস্থিত হয়ে অসংখ্য় মেষ ও ষাঁড় বলিদান করলেন| 7 এবং তারপর যাজকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি সেইখানে নিয়ে এলেন যে জায়গাটি ওটার জন্য তৈরী হয়েছিল| ঐ জায়গাটি ছিল মন্দিরের পবিত্রতম স্থান| সিন্দুকটিকে করূব দূতদের ডানার নীচে রাখা হল| 8 সাক্ষ্যসিন্দুকটিকে এমনভাবে রাখা হল যাতে ঐ ঘরে বসানো করূব দূতদের মূর্ত্তির ডানা সাক্ষ্যসিন্দুক ও সিন্দুক বহন করার ডাণ্ডার ওপর ছড়িয়ে থাকে| 9 বহন করার ডাণ্ডাগুলো এত লম্বা ছিল যে পবিত্রতম স্থানের সামনে থেকেই সেগুলো দেখা যেত| তবে মন্দিরের বাইরে থেকে এগুলো দেখা যেতো না| ঐ ডাণ্ডাগুলো এখনো পর্য়ন্ত ঠিক সেভাবেই রাখা আছে| 10 সাক্ষ্যসিন্দুকের মধ্যে দুটো পাথরের ফলকছাড়া আর কিছুই ছিল না| মোশি হোরেব পাহাড়ে এই ফলকদুটো সাক্ষ্যসিন্দুকে রেখেছিলেন| হোরেব পাহাড়েই প্রভুর সঙ্গে ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের চুক্তি হয়েছিল| ইস্রায়েলীয়রা মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর এই ঘটনা ঘটে| 11 উপস্থিত সমস্ত যাজকরা ঈশ্বর নির্দেশিত বিধি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমে নিজেদের পবিত্র করলেন| তারপর, যাজকরা সকলে বিশেষ কোনো দলে না এসে সমবেতভাবে সেই পবিত্র স্থানে এসে দাঁড়ালেন| 12 সমস্ত লেবীয় গায়করা আসফ, হেমন ও য়িদূথূন তাদের পুত্রসমূহ ও আত্মীযস্বজনসহ বেদীর পূর্বদিকে দাঁড়িয়েছিল| তাঁরা সাদা লিনেনের পোশাক পরেছিলেন এবং তাঁরা কর্তাল, বীণাসমূহ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন| তাঁদের কাছে বীণা, তানপুরা ও খঞ্জনী জাতীয বাদ্যযন্ত্র ছিল| সেখানে 120 জন যাজকও ছিলেন য়াঁরা তূরী বাজিযেছিলেন| 13 সমবেতভাবে একসুরে বাদকরা শিঙা ও কাড়ানাকাড়া বাজিযেছিলেন, গায়করা গান করেছিলেন| প্রভুকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা জ্ঞাপনের সময় মনে হচ্ছিল এঁরা যেন পৃথক পৃথক কোনো ব্যক্তি নয়, একই ব্যক্তি| কাড়ানাকাড়া, খোল, কর্তাল, বীণা, যা কিছু বাদ্যযন্ত্র ছিল, সবাই সোত্সাহে সজোরে সেসব বাজিযে গাইছিলেন, ‘প্রভুর মহিমা কীর্ত্তন করো, তিনি ভাল| তাঁর প্রেম চির প্রবাহমান|’এরপর প্রভুর মন্দির মেঘে পরিপূর্ণ হল| 14 যাজকরা তাদের কাজ চালিযে যেতে পারেন নি কারণ সেই মেঘ ছিল মন্দিরকে পূর্ণ করে দেওয়া ঈশ্বরের মহিমা|
1 তখন শলোমন বললেন, “প্রভু অন্ধকার মেঘের মধ্যে থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন| 2 হে প্রভু, আমি আপনার চিরকালের বসবাসের জন্যই এই বিশাল মন্দির বানিয়েছি|” 3 রাজা শলোমন ঘুরে দাঁড়ালেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের, যারা তাঁর সামনে জড়ো হয়েছিল তাদের আশীর্বাদ করলেন| 4 এবং শলোমন বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা কীর্ত্তিত হোক| তিনি আমার পিতা দায়ূদকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রেখেছেন| প্রভু ঈশ্বর বলেছিলেন, 5 ‘যেদিন আমি ইস্রাযেলকে মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলাম, সেই সময় থেকে আজ অবধি আমি আমার নামে বাড়ী তৈরী করবার জন্য কোন একটি বিশেষ জায়গা পছন্দ করিনি, এমন কি আমি কোন লোককেও আমার লোকদের ওপর শাসন করবার জন্য মনোনীত করি নি| 6 কিন্তু এখন আমি জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছি, আমার নামের জায়গা হিসেবে এবং আমি দায়ূদকে আমার লোক, ইস্রায়েলের ওপর শাসন করার জন্য মনোনীত করেছি|’ 7 “আমার পিতা দায়ূদ প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে একটি মন্দির বানাতে চেয়েছিলেন| 8 কিন্তু প্রভু আমার পিতাকে বলেছিলেন, ‘দায়ূদ আমার মন্দির বানানোর কথা ভেবে তুমি ভাল করেছো| 9 কিন্তু তুমি নিজে এই মন্দির বানাতে পারবে না| তোমার পুত্র শলোমন আমার নামের জন্য এই মন্দির বানাবে|’ 10 এখন প্রভুর ইচ্ছেয তাই ঘটতে চলেছে| আমার পিতা দাযূদের জায়গায় আমি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হয়েছি এবং প্রভুর কথা মতো আমি প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে এই মন্দির বানিয়েছি| 11 এবং আমি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে প্রভুর চুক্তি সমন্বিত সাক্ষ্যসিন্দুকটা ঐ মন্দিরে রেখেছি|” 12 ইস্রায়েলের সমবেত লোকের উপস্থিতিতে দুই হাত প্রসারিত করে শলোমন প্রভুর বেদীর সামনে দাঁড়ালেন| 13 উঠোনের মাঝখানে বসানো পিতলের তৈরী প্রায 5 হাত লম্বা, 5 হাত চওড়া ও 3 হাত উঁচু একটা মঞ্চে উঠলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের সামনে আভূমি নত হয়ে আকাশের দিকে দুহাত ছড়িয়ে বললেন: 14 “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে তোমার সমকক্ষ কোনো ঈশ্বর নেই| তুমি তোমার ভালবাসা ও দয়ার চুক্তিতে বিশ্বস্ত| যারা তোমার সামনে বিশ্বস্তভাবে তাদের সর্বান্তঃকরণ দিয়ে জীবনযাপন করে তাদের সঙ্গে তোমার চুক্তি বজায় রাখ| 15 আমার পিতা দায়ূদকে তুমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে আজ তাকে তুমি সত্যে পরিণত করে বাস্তবায়িত করেছো| 16 এখন প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাঁকে দেওয়া তোমার সে প্রতিশ্রুতি পালন করো| তুমি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে যে সবসমযেই ইস্রায়েলের সিংহাসনে তাঁর বংশের কেউ না কেউ অধিষ্ঠিত থাকবে| একথা তুমি ভুলো না| হে প্রভু, তুমি পিতাকে বলেছিলে যদি তাঁর সন্তানরা তাঁর মতোই তোমার প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তোমার নির্দেশিত পথে জীবন অতিবাহিত করে, তাহলে সদাসর্বদা তাঁর বংশধররাই তোমার সামনে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে| 17 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এবার তুমি তোমার দাস দায়ূদকে দেওয়া তোমার সেই প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করো| 18 “আমরা জানি যে পৃথিবীর লোকের সঙ্গে প্রভু বাস করেন না| সর্বোচচতম স্বর্গও যখন তোমায় ধরে রাখতে পারে না তখন আমার বানানো এই সামান্য মন্দির কি করে তোমায় ধরে রাখবে? 19 তাহলেও প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার প্রার্থনার প্রতি তোমাকে মনোয়োগী হতে মিনতি করি এবং তোমার অনুগ্রহ চাই| আমি, তোমার দাস তোমাকে যে কান্না এবং প্রার্থনা নিবেদন করি তা শোন| 20 যাতে এই মন্দিরে, যেখানে তুমি তোমার নাম রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলে সেখানে কি হয় তা তুমি সর্বদাই দেখতে পাও এবং যখন আমি এই মন্দিরের দিকে তাকাই তখন আমার প্রার্থনা শুনতে পাও| 21 আমার প্রার্থনা শোনো এবং তোমার লোক ইস্রায়েলের প্রার্থনা শোনো| যখন আমরা এই মন্দিরের দিকে তাকিযে প্রার্থনা করব আমাদের প্রার্থনা শুনো| তুমি অনুগ্রহ করে স্বর্গ থেকে আমাদের প্রার্থনা শোনো এবং আমরা যা পাপ করি তা ক্ষমা করে দাও| 22 “কারোর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ করার পর কেউ যখন এই মন্দিরের বেদীর সামনে দাঁড়িয়ে তোমার নামে শপথ নিয়ে কথা বলবে, 23 তখন স্বর্গ থেকে সত্যি মিথ্য়া বিচার করে সেই অপরাধীকে তার কৃত অপরাধের যথায়োগ্য শাস্তি দিও| আর যদি কেউ নিরপরাধী হয় তবে তাকে রক্ষা করো| 24 “তোমার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করার অপরাধে হয়তো কখনও শএুরা তোমার সেবক ইস্রায়েলীয়দের যুদ্ধে পরাজিত করবে| তারপর যদি ইস্রায়েলীয়রা আবার তোমার কাছে এসে এই মন্দিরে দাঁড়িয়ে তোমার নামের প্রশংসা করে এবং প্রার্থনা করে ও ক্ষমা ভিক্ষা করে, 25 তাহলে স্বর্গ থেকে তাদের সেই প্রার্থনায সাড়া দিয়ে তুমি তোমার সেবক ইস্রায়েলীয়দের ক্ষমা করে তাদের পূর্বপুরুষকে তুমি যে বাসস্থান দিয়েছিলে তা ফিরিযে দিও| 26 “তোমার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করার জন্য হয়তো আকাশ শুকিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড খরা হবে| তখন যদি তারা এই মন্দিরের দিকে প্রার্থনা করে, তাদের পাপ স্বীকার করে এবং তুমি তাদের শাস্তি দিয়েছ বলে পাপকাজ করা বন্ধ করে, 27 তাহলে স্বর্গ থেকে তাদের সেই প্রার্থনায সাড়া দিয়ে তুমি তাদের ক্ষমা করে দিও| আর তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করে, তোমার দেওয়া এই ভূখণ্ডে আবার বৃষ্টি পাঠিও| 28 “যখন দুর্ভিক্ষ অথবা মহামারী লাগবে, তাদের শস্যে রোগসমূহ দেখা দেবে, ফড়িং অথবা পঙ্গপাল শস্য নষ্ট করবে, অথবা শএুরা যখন ইস্রাযেলবাসীকে তাদের শহরগুলিতে আক্রমণ করবে অথবা ইস্রায়েলে প্লেগ বা ব্যধি যাই আসুক, 29 তখন যদি কোন ব্যক্তি অথবা ইস্রায়েলের সব লোকরা, যাদের প্রত্যেকে তার নিজের রোগ এবং ব্যথার কথা জানে যদি দুহাত প্রসারিত করে এই মন্দিরের দিকে তাকিযে তোমায় কোন প্রার্থনা বা আবেদন জানায, 30 তখন তুমি যেখানে বাস কর সেই স্বর্গ থেকে তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার অপরাধ ক্ষমা করো| তুমি তো ঈশ্বর, সবার হৃদয় ও মনের কথা তুমি জানো তাই যার যা প্রাপ্য় তাকে তাই দিও| 31 তাহলে যে দেশ তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে, যতদিন তারা সেখানে বসবাস করবে ততদিন তোমায সমীহ ও মান্য করবে| 32 “হয়তো তোমার মহিমা ও সাহায্যের কথা শুনে ভিনদেশীদের কেউ এসে এই মন্দিরের দিকে তাকিযে তোমার কাছে প্রার্থনা করবে| 33 তখন স্বর্গ থেকে তুমি সেই ভিনদেশীর প্রার্থনার ডাকে সাড়া দিও, তাহলে এই পৃথিবীর সবাই তোমার মহিমার কথা জানতে পারবে এবং ইস্রায়েলীয়দের মতোই তোমায় শ্রদ্ধা করবে| পৃথিবীর সকলে তোমার নাম মাহাত্ম্য় প্রচারের জন্য বানানো আমার এই মন্দিরের কথা জানতে পারবে| 34 “তুমি তোমার লোকদের অন্য কোথাও তাদের শএুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠাবে এবং তারা তোমার পছন্দ করা শহর ও মন্দিরের দিকে তাকিযে তোমার কাছে প্রার্থনা করবে| 35 তখন তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা এবং আবেদন শোনো এবং তাদের সাহায্য কোরো| 36 “এমন কোনো ব্যক্তি নেই যে পাপ করে না| লোকরা যখন তোমার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করে তোমায় রুদ্ধ করে তুলবে তুমি তাদের শএুদের হাতে যুদ্ধে পরাজিত করে সুদূরের কোনো দেশে বন্দীত্ব বরণে বাধ্য করবে| 37 কিন্তু তার পরে যখন তাদের মনোভাবের পরিবর্তন হবে আর সেই দূর দেশে বন্দীদশার মধ্যে তারা বলে উঠবে, ‘হে প্রভু, আমরা পাপ করেছি এবং দুষ্ট ও খুব নিষ্ঠুর আচরণ করেছি|’ 38 যদি তারা তাদের বন্দীদশার় দেশে সর্বান্তঃকরণে তোমার দিকে মুখ ফিরিযে নেয, তাদের পূর্বপুরুষকে তোমার দেওয়া ভূখণ্ডের দিকে মুখ করে, তোমার এই পবিত্র শহরের উদ্দেশ্যে আকাশের দিকে তাকিযে আমার দ্বারা তোমার জন্য বানানো মন্দিরের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করে, 39 তখন স্বর্গে, তোমার বাসস্থান থেকে তাদের প্রার্থনা এবং আবেদনে তুমি সাড়া দিও, এবং যারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে তোমার সেই লোকদের তুমি সাহায্য কর এবং ক্ষমা করে দিও| 40 হে আমার ঈশ্বর, এখন আমি এখানে দাঁড়িয়ে তোমার কাছে যে প্রার্থনা করছি স্বকর্ণে তুমি সেই প্রার্থনা শোনো, তোমার করুণাময চোখ মেলে আমাদের এই প্রার্থনাস্থলে দৃষ্টিপাত করো| 41 “এখন, হে প্রভু ঈশ্বর, তুমি ওঠ এবং বিশ্রামের জন্য তোমার মনোনীত স্থানে সাক্ষ্যসিন্দুক নিয়ে এসো যা তোমার ক্ষমতার প্রতীক| হে প্রভু, আমার ঈশ্বর, তোমার যাজকদের পরিধানে সদাসর্বদা থাকবে পরিত্রাণের পোশাক, আর তোমার একনিষ্ঠ ভক্তরা মঙ্গলে আনন্দ করুক| তোমার সেবক যাজকরা যেন সবসময় ত্যাগের পোশাক পরে থাকে| 42 হে প্রভু ঈশ্বর, তোমার অভিষিক্ত লোকদের বাতিল কর না; তোমার অনুগত দাস দাযূদের বিশ্বস্ত কাজগুলি মনে রেখো|”
1 শলোমনের প্রার্থনা শেষ হলে, আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা নেমে এসে হোমবলি নিবেদিত উত্সর্গগুলিকে পুড়িয়ে ফেলল এবং প্রভুর মহিমার উপস্থিতিতে সমস্ত মন্দির ভরে গেল| 2 প্রভুর মহিমার উপস্থিতির কারণে যাজকরা প্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করতে পারলেন না| 3 সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা যারা এই অগ্নিশিখা ও প্রভুর মহিমার উপস্থিতি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করল তারা তাদের মাথা আভূমি নত করল, তারা প্রভুর উপাসনা করল এবং গাইল, “আমাদের প্রভু মহান; তাঁর করুণা সদা প্রবহমান|” 4 অতঃপর রাজা শলোমন এবং ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর সামনে 5 শুধুমাত্র ঈশ্বরের উপাসনার জন্য 22,000 ষাঁড় এবং 1,20,000 মেষ বলি দিয়ে মন্দিরটিকে শুদ্ধ ও পবিত্র করলেন| 6 যাজকরা, য়াঁরা কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন, তাঁরা লেবীয়দের বিপরীতে দাঁড়িয়েছিলেন| যাজকরা শিঙা বাজিযে উঠলেন এবং লেবীয়রা বাদ্যয়ন্ত্রের দ্বারা, যা রাজা দায়ূদ বানিয়েছিলেন প্রভুর প্রশংশা গান গাইবার জন্য কারণ তিনি চিরবিশ্বস্ত| যখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোক সেখানে দাঁড়িয়েছিল| 7 এবং শলোমন প্রভুর মন্দিরের সামনের অঙ্গণের মধ্যভাগ নিবেদন করলেন এবং তিনি হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য়ের চর্বি অংশটি উত্সর্গ করলেন| শলোমন এই উত্সর্গগুলি অঙ্গণের মাঝখানে নিবেদন করলেন কারণ তিনি পিতলের যে বেদীটি বানিয়েছিলেন সেটি হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য চর্বি ধারণের পক্ষে খুবই ছোট ছিল| 8 শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকরা টানা সাত দিন ধরে খাওয়াদাওযা ও উত্সব করলেন| শলোমনের সঙ্গে অনেকে ছিলেন| এঁরা সকলে হমাতের প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে মিশরের ঝর্ণা পর্য়ন্ত বিস্তৃত সুবিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাস করতেন| 9 সাতদিন উত্সব পালনের পরে অষ্টম দিনের দিন একটা বড় পবিত্র সভার আযোজন করা হল| এরপর শুধুমাত্র প্রভুর উপাসনার জন্য বেদীটিকে পবিত্র করে তাঁরা আরো সাতদিন ধরে খাওয়াদাওযা ও আনন্দ করলেন| 10 সপ্তম মাসের 23 দিনের দিন শলোমন সবাইকে তাদের বাড়িতে ফেরত্ পাঠালেন| দায়ূদ ও তাঁর পুত্র শলোমন এবং ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি প্রভুর কৃপাদৃষ্টির কথা ভেবে সবাই খুবই খুশী ছিল এবং তাদের হৃদয় ভরে ছিল এক অনির্বচনীয আনন্দে| 11 শলোমন সফলভাবে প্রভুর মন্দির ও তাঁর নিজের রাজপ্রাসাদ নির্মাণের কাজ শেষ করলেন| 12 তারপর রাতে বয়ং প্রভু শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “শলোমন, তোমার প্রার্থনা আমার কানে পৌঁছেছে| এই স্থানটিকে আমি আমার কাছে বলিদানের জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছি| 13 যদি আমি খরা পাঠাই অথবা পঙ্গপালের ঝাঁককে জমি গ্রাস করার আদেশ দিই অথবা যদি আমি লোকদের জীবনে ব্যাধি পাঠাই, 14 তখন যদি আমার লোকরা অসত্ পথ ও আচরণ ত্যাগ করে ব্যাকুল ও অনুতপ্ত চিত্তে আমায় ডাকে, তবে আমি অবশ্যই তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাদের পাপকে ক্ষমা করব এবং দেশটিকে সারিযে তুলব| 15 এখন যে প্রার্থনা এই স্থানে নিবেদিত হবে আমি তার প্রতি সজাগ থাকবো| 16 আমি এই মন্দিরকে আমার নাম প্রচারের জন্যে বেছে নিয়েছি এবং আমার উপস্থিতি দিয়ে একে পবিত্র করেছি| আমার দৃষ্টি ও হৃদয় সদাসর্বদা এখানেই থাকবে| 17 “শোনো শলোমন, তুমি যদি তোমার পিতা দাযূদের মতো আমার বিধি ও নিয়ম মেনে জীবনযাপন করো, 18 তাহলে তোমার পিতা দাযূদের সঙ্গে আমি যে চুক্তি করেছিলাম, যাতে আমি বলেছিলাম, ‘তোমার উত্তরপুরুষদের একজন সর্বদা ইস্রাযেল শাসন করবে,” সেই চুক্তি অনুযায়ীআমি তোমাকে শক্তিশালী রাজা করে তুলবো|’ 19 “কিন্তু তুমি যদি আমার বিধি নির্দেশ যা আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, অমান্য কর এবং অন্যান্য মূর্ত্তিসমূহের পূজো কর ও তাদের সেবা করতে শুরু করো, 20 তাহলে আমি আমার যে ভূখণ্ড তাদের দিয়েছিলাম সেখান থেকে ইস্রায়েলের লোকদের বিতাড়িত করব; এবং আমার নামে বানানো এই পবিত্র মন্দির ত্যাগ করব এবং এর এমন দশা করবো যে সমস্ত জাতিসমূহের মধ্যে সেটা একটা উপহাসের পাত্র হয়ে দাঁড়াবে| 21 এখন এই গৃহটি মহিমান্বিত| কিন্তু যখন এসব ঘটবে, যারাই এর পাশ দিয়ে হেঁটে যাবে, আশ্চর্য্য় হয়ে বলবে, ‘প্রভু কেন এই দেশ ও মন্দিরের প্রতি এই আচরণ করলেন?’ 22 তখন লোকরা উত্তর দেবে, ‘কারণ ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরকে, যিনি তাদের মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন, তাঁকে পরিত্যাগ করেছে| তারা অন্য মূর্ত্তিসমূহের পূজো করে ও তাদের সেবা করে তাদের গ্রহণ করেছে| এই কারণে প্রভু তাদের ওপরে এই ভয়ঙ্কর এবং আতঙ্কজনক শাস্তি এনে দিয়েছেন|”
1 প্রভুর মন্দির ও নিজের রাজপ্রাসাদ বানাতে শলোমনের 20 বছর সময় লেগেছিল| 2 এরপর হূরম তাঁকে যে শহরগুলো দিয়েছিলেন শলোমন সেগুলির সংস্কার করেন| ইস্রায়েলের বেশ কিছু লোককে তিনি ঐ সমস্ত শহরে বসবাসের অনুমতি দিয়েছিলেন| 3 অতঃপর তিনি সোবাতের হমাত্ দখল করেন| 4 তিনি মরু অঞ্চলে তদ্মোর শহরটি এবং হমাতে গুদাম শহরগুলিও বানিয়েছিলেন| 5 এছাড়াও তিনি শক্তিশালী দূর্গ হিসেবে ঊর্দ্ধ বৈত্-হোরোণ ও নিথ বৈত্-হোরোণের শহরগুলো দেওয়াল ও ফটক সহ হুড়কো লাগিয়ে তৈরী করেছিলেন| 6 জিনিসপত্র মজুত রাখার জন্য বালত্ সহ আরো কযেকটি শহর পুননির্মাণ করেছিলেন| রথ রাখার জন্য ও অশ্বারোহী সারথীদের বসবাসের জন্যও তাঁকে বেশ কিছু শহর বানাতে হয়েছিল| জেরুশালেমে লিবানোন সহ তাঁর সমগ্র রাজ্যে শলোমন যা কিছু বানাতে চেয়েছিলেন সবই বানিয়েছিলেন| 7 হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয়দের সমস্ত উত্তরপুরুষরা এরা ইস্রায়েলীয় ছিল না| যাদের ইস্রায়েলীয়রা য়িহোশূযার জয়যাত্রার সময় ধ্বংস করেনি তারা শলোমন দ্বারা এীতদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়েছিল| তারা আজও তাই করে| এরা সকলেই ছিল ইস্রায়েলীয়দের ধ্বংস করা অন্যান্য শএু রাজ্যের বাসিন্দাদের উত্তরপুরুষ| 8 9 কিন্তু শলোমন কোন ইস্রায়েলীয়কে এীতদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করেননি| ইস্রায়েলীয়রা সকলেই ছিল তাঁর য়োদ্ধা এবং তাঁর আধিকারিক যারা তাঁর রথবাহিনী ও অশ্বারোহী সৈনিকদের চালনা করতেন| 10 কেউ কেউ ছিলেন শলোমনের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের আধিকারিক অথবা নেতা| 250 জন নেতা এই সমস্ত লোকদের তত্ত্বাবধান করতেন| 11 শলোমন দায়ূদ নগর থেকে ফরৌণের কন্যাকে নিয়ে এসেছিলেন এবং তাকে তার জন্য বানানো এক সুন্দর বাড়িতে রেখেছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমার স্ত্রী, ইস্রায়েলের রাজা দাযূদের প্রাসাদে থাকবে না কারণ, সমস্ত জায়গাগুলো যেখানে যেখানে সাক্ষ্যসিন্দুকটি রাখা ছিল সেগুলো অতি পবিত্র জায়গা|” 12 এরপর শলোমন মন্দিরের সামনের দালানে প্রভুর জন্য তাঁর বানানো বেদীতে প্রভুকে হোমবলি নিবেদন করলেন| 13 মোশির আদেশ মতোই শলোমন প্রত্যেক দিন বলিদান করা ছাড়াও বিশ্রামের দিন, অমাবস্যায ও তিনটে বাত্সরিক ছুটির দিনে নিয়মিত বলি উত্সর্গ করতেন| এই তিনটে বাত্সরিক ছুটির দিন হল খামিরবিহীন রুটির উত্সবের দিন, সাত সপ্তাহের উত্সবের দিন ও কুটিরবাস পর্বের দিন| 14 তাঁর পিতা রাজা দাযূদের নির্দেশ মতোই তিনি মন্দিরের কাজকর্মের জন্য যাজক ও লেবীয়দের দলভাগ করে দিয়েছিলেন| লেবীয়রা মন্দিরের নিত্য নৈমিত্তিক কাজকর্মে যাজকদের সহায়তা করতেন| এছাড়াও মন্দিরের প্রত্যেকটি ফটকের জন্য শলোমন দ্বাররক্ষীদের দলও নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন| 15 ইস্রায়েলীয়রা কখনো যাজক ও লেবীয় সংএান্ত শলোমনের দেওয়া কোনো নির্দেশ অমান্য বা তার কোনো পরিবর্তন করেননি| এমনকি দুর্মূল্য জিনিসপত্র রাখার ব্যাপারেও তাঁরা শলোমনের বিধান মেনে নিয়েছিলেন| 16 প্রভুর মন্দিরের ভিত্তিস্থাপনের দিন থেকে সেটি শেষ হওয়া পর্য়ন্ত, শলোমনের সব কাজ তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ীকরা হয়| 17 এরপর শলোমন লোহিত সাগরের তীরস্থ ইদোমের ইত্সিযোন গেবরে ও এলতে যান| 18 হূরম সেখানে তাঁর নিজস্ব দক্ষ নাবিকদের দ্বারা পরিচালিত জাহাজ পাঠান| শলোমনের দাসরা এদের সঙ্গে ওফীরে গিয়ে তাঁর জন্য 17 টন সোনা নিয়ে এসেছিল|
1 শিবার রাণী শলোমনের খ্যাতির কথা শুনে তাঁকে পরীক্ষা করতে বয়ং জেরুশালেমে এলেন| শিবার রাণীর সঙ্গে একটা বড় সড় দল উটের পিঠে মশলাপাতি, প্রচুর পরিমাণে সোনা ও মূল্যবান পাথর বয়ে নিয়ে এসেছিল| তিনি শলোমনের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে অনেক শক্ত শক্ত রশ্ন করলেন| 2 শলোমন তাঁর সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন কারণ তাঁর ব্যাখ্যার অতীত বা বোধগম্য় নয় এমন কিছুই ছিল না| 3 শিবার রাণী তাঁর প্রজ্ঞার পরিচয পেলেন এবং তাঁর বানানো প্রাসাদের চারদিকে তাকিযে, 4 শলোমনের টেবিলে পরিবেশন করা খাবার দাবার, তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রাজকর্মচারী, ভৃত্যদের কাজের ধারা ও তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, শলোমনের দ্রাক্ষারস পরিবেশক, তাদের পরিধেয বস্ত্র, ইত্যাদি ছাড়াও প্রভুর মন্দিরে শলোমনের দেওয়া হোমবলির পরিমাণ দেখে তিনি বিস্মযে অভিভূত হয়ে গেলেন| 5 তারপর তিনি রাজা শলোমনকে বললেন, “আমি আমার দেশে বসে আপনার অতুল কীর্তি ও জ্ঞানের সম্পর্কে যা শুনেছিলাম দেখছি তার সবই সত্যি| 6 এখানে এসে স্বচক্ষে না দেখা পর্য়ন্ত আমি সেসব কথা বিশ্বাস করি নি, কিন্তু এখন দেখছি আমি যেসব গল্প শুনেছিলাম, আপনার প্রকৃত জ্ঞান তার চেয়েও ঢ়েব বেশী| 7 আপনার স্ত্রীদের ও আপনার অধীনস্থ কর্মচারীদের কি সৌভাগ্য যে তাঁরা সর্বক্ষণ আপনার সেবা করতে করতে আপনার বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তা শুনতে পান| 8 তোমার প্রভু ঈশ্বরের যথার্থই প্রশংসা করো| তিনি আপনার মতো একজন সেবককে তাঁর সিংহাসনে বসিযে নিশ্চয়ই খুবই সন্তুষ্ট| তিনি প্রকৃতই ইস্রাযেলকে সহানুভূতি ও প্রেমসহ দেখেন এবং তাকে চিরকালের মতো দাঁড় করিযে দিতে চান এবং সেজন্যই তিনি আপনাকে যথায়থ এবং ঠিক কাজ করবার জন্য ইস্রায়েলের রাজা করেছেন|” 9 এরপর শিবার রাণী শলোমনকে 4 1,2 টন সোনা সহ বহু মশলাপাতি ও দামী দামী পাথর উপহার দিলেন| তাঁর মতো এতো উত্কৃষ্ট মশলাপাতি রাজা শলোমনকে কেউ কখনো উপহার দেননি| 10 রাজা হূরম ও শলোমনের ভৃত্যরা ওফীর থেকে সোনা ছাড়াও, চন্দন কাঠ ও বহু দামী দামী পাথর এনেছিলেন| 11 রাজা শলোমন সেই কাঠ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের ও রাজপ্রাসাদের সিঁড়িগুলি এবং বীণা ও বাদ্যয়ন্ত্রাদি বানিয়েছিলেন| যিহূদার কেউ এর আগে চন্দন কাঠ দিয়ে বানানো এতো সুন্দর জিনিস দেখে নি| 12 রাজা শলোমনও, শিবার রাণীকে তিনি যা যা চেয়েছিলেন সবই দিয়েছিলেন| তিনি শলোমনকে যা উপহার দিয়েছিলেন শলোমন তার থেকেও অনেক বেশী পরিমাণ উপহার শিবার রাণীকে দিয়েছিলেন| তারপর শিবার রাণী ও তাঁর ভৃত্যরা নিজের দেশে ফিরে গেলেন| 13 প্রতি বছর শলোমনের প্রায 25 টন সোনা সংগ্রহ হতো| 14 বণিক ও ব্যবসাযীরা ছাড়াও আরবের সমস্ত রাজারা এবং দেশের শাসনকর্তারা শলোমনের জন্য বহু পরিমাণে সোনা ও রূপো নিয়ে আসতেন| সোনা ও রূপো ছাড়াও তাঁরা ঘোড়া ও খচচরের পিঠে চাপিয়ে কাপড়চোপড়, অস্ত্রশস্ত্র, মশলাপাতি নিয়ে আসতেন| 15 রাজা শলোমন পেটানো সোনা দিয়ে 200 খানা বড় বড় ঢাল বানিয়েছিলেন| এক একটা ঢাল বানাতে প্রায 7 1,2 টন করে সোনা ব্যবহার করা হয়েছিল| 16 এছাড়াও তিনি পেটানো সোনায ছোট ছোট 300টি ঢাল বানিয়েছিলেন, যার এক একটা বানাতে প্রায 3 3,4 টন করে সোনা ব্যবহার করা হয়েছিল| এই সমস্ত ঢালগুলো শলোমন তাঁর প্রাসাদে টাঙিযে রেখেছিলেন| 17 শলোমন হাতির দাঁত দিয়ে একটা বিশাল রাজসিংহাসনও বানিয়েছিলেন এবং সেটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন| 18 এই সিংহাসনে ছটা ধাপ দিয়ে উঠতে হতো আর এর পা-দানীটি ছিল খাঁটি সোনায বানানো| সিংহাসনের দুধারের হাতলের পাশে ছিল একটা করে সিংহের প্রতিমূর্ত্তি| 19 সিংহাসনে ওঠার ধাপগুলোর প্রত্যেকটার দুধারে একটা করে ছটা ছটা মোট 12টা সিংহের প্রতিকৃতি ছিল| অন্য কোন রাজ্যে কখনো এধরনের কোন সিংহাসন বসানো হয়নি| 20 শলোমনের প্রত্যেকটা পানপাত্র ছিল সোনায বানানো| প্রাসাদের সমস্ত জিনিস ছিল সোনায তৈরী| শলোমনের রাজত্বের সময় সোনা ও রূপো এতো সুলভ হয়ে পড়েছিল যে সোনা ও রূপোকে কেউ মূল্যবান জিনিস বলে গণ্যই করতো না, 21 কারণ রাজার জাহাজ প্রতি তিন বছর অন্তর তর্শীশে পাড়ি দিত এবং হূরমের নাবিকরা জাহাজ ভরে সোনা ও রূপো, হাতির দাঁত, নানান প্রজাতির বাঁদর ও মযূর নিয়ে আসত| 22 সম্পদে ও বুদ্ধিতে পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত রাজাদের তুলনায় শলোমন অনেক বড় ছিলেন| 23 পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাজারা শলোমনের কাছে তাঁর ঈশ্বর প্রদত্ত জ্ঞান ও সূক্ষ্ম বিচার বুদ্ধির পরিচয পেতে আসতেন| 24 প্রত্যেক বছর এই সমস্ত রাজারা শলোমনের জন্য সোনা ও রূপোয বানানো জিনিসপত্র, জামাকাপড়, মশলাপাতি, ঘোড়া, খচচর ইত্যাদি নিয়ে আসতেন| 25 ঘোড়া ও রথ রাখার জন্য শলোমন 4,000 আস্তাবল বানিয়েছিলেন| তাঁর সারথির মোট সংখ্যা 12,000 ছিল| এদের থাকার জন্য বানানো বিশেষ কযেকটি শহর ও তাঁর কাছে জেরুশালেমে তাদের রাখা হতো| 26 শলোমন, ফরাত্ নদী থেকে শুরু করে পলেষ্টীয়দের দেশ বরাবর মিশরের সীমানা পর্য়ন্ত সমস্ত রাজাদের শাসক হলেন| 27 রাজা শলোমন তাঁর সমযে এত প্রচুর পরিমাণ রূপো সংগ্রহ করেছিলেন যে তিনি জেরুশালেমে রূপোকে পাথরের মত সস্তা করে তুলেছিলেন| ইস্রায়েলের উপকূলবর্তী অরণ্যে অন্য যে কোন গাছের মতো দামী ধরণের এরস গাছপালা ছিল খুব মামুলি| 28 লোকেরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শলোমনের কাছে ঘোড়া নিয়ে আসতেন| 29 শলোমন প্রথম থেকে শেষ পর্য়ন্ত যে সমস্ত কাজ করেছিলেন ভাব্বাদী নাথনের ইতিহাস থেকে, শীলোনীয অহীযর ভবিষ্যদ্বাণী থেকে এবং ভাব্বাদী ইদ্দোর নবাটের পুত্র যারবিযাম সম্পর্কিত দর্শন থেকে সে সমস্তই জানা যায়| 30 শলোমন 40 বছর ধরে জেরুশালেম থেকে সমগ্র ইস্রাযেল শাসন করেছিলেন| 31 তারপর তাঁর মৃত্যু হলে তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরে চিরনিদ্রায সমাহিত করা হল| এরপর শলোমনের পুত্র রহবিয়াম শলোমনের জায়গায় নতুন রাজা হলেন|
1 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক রহবিয়ামকে নতুন রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করবার জন্য শিখিমে জমায়েত হয়েছিল, তাই রহবিয়াম সেখানে গিয়েছিলেন| 2 নবাটের পুত্র যারবিযাম যখন একথা শুনলেন, তিনি মিশর থেকে যেখানে তিনি রাজা শলোমনের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানে ফিরে এলেন| 3 ইস্রায়েলের উত্তরাঞ্চলের উপজাতিরা তাঁকেও তাদের সঙ্গে য়োগ দিতে বললেন| এবং তিনি ও ইস্রায়েলের সবাই রহবিয়ামের কাছে গিয়ে বললেন, 4 “মহারাজ, আপনার পিতার জন্য আমাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল| এখন আপনি দয়া করে সেই বোঝা কিছুটা হাল্কা করলে আমরা আপনার জন্য কাজ-কর্ম করতে পারি|” 5 রহবিয়াম তাদের বললেন, “তোমরা তিনদিন পরে আমার কাছে ফিরে এসো|” সুতরাং তারা তখনকার মতো চলে গেল| 6 তখন রাজা রহবিয়াম, তাঁর পিতার আমলে কাজ করেছেন এরকম সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন| রহবিয়াম তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনারা পরামর্শ দিন এখন আমি কি করব?” 7 প্রবীণরা তাঁকে বললেন, “আপনি যদি এই সমস্ত প্রজাদের সঙ্গে সদ্ব্য়বহার করেন এবং তাদের কষ্ট লাঘব করার ব্যবস্থা করেন তাহলে তারা চিরজীবন আপনার অনুগত হয়ে কাজ করবে|” 8 কিন্তু রহবিয়াম প্রবীণদের কথায় কর্ণপাত করলেন না| তার বদলে তিনি যাদের সঙ্গে বড় হয়েছিলেন সেই যুবকদের একই কথা জিজ্ঞাসা করলেন, 9 “এই লোকদের আমি কি উত্তর দেব? ওরা আমাকে ওদের কাজের ভার কমাতে বলছে|” 10 তখন রহবিয়ামের বন্ধু ও সঙ্গীরা তাঁকে পরামর্শ দিলেন, “যেসব লোক তাদের কাজের ভার নিয়ে নালিশ করেছে, আপনি তাদের এই কথা বলুন| লোকরা আপনাকে বলছে, ‘আপনার পিতা আমাদের জীবন কঠিন করে তুলছে, ইহা অত্যন্ত ভারী বোঝার মতো| কিন্তু আমরা চাই আপনি তা লঘু করুন|’ কিন্তু রহবিয়াম তাদের বলল, ঐসব লোকদের ডাকুন আর বলুন, “বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় হয়|” 11 তোমরা বলছো যে আমার পিতা নাকি তোমাদের খাটিযে মারছিলেন, তোমাদের ওপর বড্ড বোঝা পড়ছিল? বোঝা কাকে বলে এবার বুঝবে| আমি তোমাদের কি রকম কাজ করাই দেখো| আমার পিতা তোমাদের শুধু চাবকাতেন| আমি তোমাদের কাঁকড়া বিছে দিয়ে চাবকাবো|” 12 তিনদিন পরে আমার কাছে রহবিয়ামের আদেশ মতো, যারবিযাম সহ সবাই তাঁর কাছে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানতে এলো| 13 প্রবীণদের কথায় কান না দিয়ে সঙ্গীদের পরামর্শ মতো রহবিয়াম তাঁদের সঙ্গে খুব কর্কশভাবে কথা বললেন এবং 14 সঙ্গীদের উপদেশ অনুযায়ীবললেন, “আমার পিতা তোমাদের জোযালকে ভারী করেছিলেন, আমি তাকে আরো ভারী করব| আমার পিতা শুধু তোমাদের চাবকাতেন, কিন্তু আমি কাঁকড়া বিছে দিয়ে চাবকাবো|” 15 অর্থাত্ রহবিয়াম প্রজা সাধারণের আবেদনে কোনো কর্ণপাত করলেন না| অবশ্য যাতে যারবিযাম সম্পর্কে বলা শীলোনীয অহিযের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হয় তাই এসব ঘটনা প্রভুর অভিপ্রায় অনুযায়ীঘটেছিল| 16 যখন ইস্রায়েলের লোকরা দেখল যে রাজা রহবিয়াম তাঁদের আবেদনে কোনই মনোয়োগ দিলেন না, তখন তাঁরা উত্তর দিলেন, “আমরা কি দাযূদের বংশের অধিকারভুক্ত অথবা য়িশযের উত্তরাধিকারে আমাদের কোন দাবী আছে? না! সুতরাং ইস্রাযেল, চল আমরা আমাদের নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাই এবং দাযূদের বংশ নিজেই দেখাশোনা করুক|” সুতরাং ইস্রায়েলের উত্তরাঞ্চলের উপজাতি সমস্ত লোক যে যার নিজের বাড়িতে ফিরে গেল| 17 সুতরাং, যারা যিহূদা অঞ্চলে বাস করত শুধুমাত্র সেই লোকদের ওপর রহবিয়াম রাজত্ব করেছিলেন| 18 হদোরাম এীতদাসদের ওপর নজরদারির কাজ করতো| যখন রহবিয়াম তাকে উত্তরাঞ্চলের উপজাতি লোকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য পাঠিয়েছিলেন, তারা সকলে পাথর ছুঁড়ে হদোরামকে হত্যা করেছিল| তখন রহবিয়াম তাড়াতাড়ি নিজের রথে চড়ে জেরুশালেমে পালিয়ে গেলেন| 19 এই ঘটনার পর থেকে আজ পর্য়ন্ত উত্তরাঞ্চলের জনগোষ্ঠী দাযূদের বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এসেছে|
1 রহবিয়াম জেরুশালেমে এসে যিহূদা ও বিন্যামীনের উপজাতিগুলির থেকে বেছে 1,80,000 সেনা জোগাড় করলেন| তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নিজের জন্য রাজ্য দখল করা| 2 কিন্তু প্রভু ভাব্বাদী শময়িয়র সঙ্গে কথা বললেন এবং বললেন, 3 “শময়িয় যাও, গিয়ে রহবিয়াম আর যিহূদা ও বিন্যামীনে বসবাসকারী ইস্রায়েলীয়দের গিয়ে বলো 4 আমি বলেছি, প্রভু বলেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে বাড়িতে ফিরে যাও কারণ আমার অভিপ্রায়েই এই ঘটনা ঘটেছে|”‘ প্রভুর বার্তা শুনে যারবিযামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে রহবিয়াম ও তাঁর সেনাবাহিনীর সবাই যে যার বাড়ি ফিরে গেল| 5 রহবিয়াম নিজে জেরুশালেমে বাস করতেন| তিনি শএুপক্ষের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য যিহূদায় অনেক সুদৃঢ় শহর বানিয়েছিলেন| 6 তিনি যিহূদা ও বিন্যামীনের বৈত্লেহম, ঐটম, তকোয, বৈত্-সুর, সেখো, অদুল্লম, গাত্, মারেশা, সীফ, অদোরযিম, লাখীশ, অসেকা, সরা, অযালোন ও হিব্রোণ প্রমুখ শহরগুলো শক্তিশালী করেন| 7 8 9 10 11 এই শহরগুলো শক্তিশালী করবার পর তিনি এই শহরগুলির জন্য সেনাপতিসমূহ নিযোগ করলেন এবং তাদের খাবার, তেল, দ্রাক্ষারস ইত্যাদি সরবরাহ করেছিলেন এবং 12 এই সমস্ত শহরগুলোতে রহবিয়াম ঢাল এবং বর্শাসমূহ রেখেছিলেন যাতে তারা শহরগুলি প্রতিরক্ষা করতে পারে| সুতরাং শহরগুলি রহবিয়ামের অধিকারভুক্ত ছিল| 13 যাজকগণ এবং ইস্রায়েলের উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলের জনগোষ্ঠীর লোকেরা ও লেবীয়রা এলেন এবং রহবিয়ামকে সমর্থন করবার জন্য তাঁর সঙ্গে য়োগ দিলেন| 14 লেবীয়রা তাঁদের নিজস্ব চাষ আবাদের জমি ও ঘাস জমি ছেড়ে যিহূদা এবং জেরুশালেমে চলে এসেছিলেন, কারণ যারবিযাম ও তাঁর পুত্ররা তাঁদের প্রভুর যাজক হিসেবে কাজ করতে দেননি| 15 বেদীতে তাঁর তৈরী বাছুর ও ছাগলের মূর্ত্তিগুলোর সামনে পূজো করার জন্য তিনি নিজের পছন্দমতো যাজকদের নিয়োগ করেছিলেন| 16 লেবীয়রা যখন ইস্রাযেল ত্যাগ করে চলে গেলেন তখন ইস্রায়েলের ধর্মভীরু পরিবারগোষ্ঠীর সদস্যরাও জেরুশালেমে তাঁদের পূর্বপুরুষের প্রভুর কাছে বলিদান করার জন্য চলে এলেন| 17 জেরুশালেমে এসে এই লোকরা যিহূদাকে শক্তিশালী করল এবং রহবিয়ামকে তিন বছরের জন্য সহায়তা দিল, কারণ তারা দায়ূদ ও শলোমনের মতো ঈশ্বরকে মান্য করে জীবনযাপন করেছিল| 18 রহবিয়াম দাযূদের পুত্র য়িরীমোতের কন্যা মহলত্কে বিয়ে করেছিলেন| মহলতের মাতা অবীহযিল ছিলেন য়িশযের পৌত্রী, ইলীয়াবের কন্যা| 19 রহবিয়াম আর মহলতের পুত্রদের নাম ছিল: য়িযূশ, শমরিয় এবং সহম| 20 এরপর, রহবিয়াম অবশালোমের কন্যা মাখাকে বিয়ে করেন| তাঁদের দুজনের পুত্রের নাম হল: অবিয, অত্তয, সীষ এবং শলোমীত্| 21 রহবিয়ামের 18 জন স্ত্রী ও 60 জন উপপত্নী থাকলেও তিনি তাঁর স্ত্রী মাখাকেই সবচেয়ে বেশী ভালবাসতেন| সব মিলিযে রহবিয়ামের 28 জন পুত্র ও 60 জন কন্যা হয়েছিল| 22 তাঁর পুত্রদের মধ্যে রহবিয়াম অবিযকে য়ুবরাজ, তার ভাইদের মধ্যে নেতা বলে ঘোষণা করেন কারণ তিনি তাকেই পরবর্তী রাজা করতে চেয়েছিলেন| 23 বিচক্ষণতার সঙ্গে রহবিয়াম তাঁর পুত্রদের যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত জায়গায়, দূর্গসম্বলিত সমস্ত শহরে পাঠিয়েছিলেন এবং তাদের সঙ্গে পর্য়াপ্ত পরিমাণে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়েছিলেন| তিনি তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করেছিলেন|
1 এমশঃ রহবিয়াম তাঁর রাজ্যের ভিত সুদৃঢ় করে একজন ক্ষমতাশালী রাজায পরিণত হলেন| কিন্তু এরপর রহবিয়াম ও যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী প্রভুর বিধি ও নির্দেশ অমান্য করতে শুরু করলেন| 2 এর ফলস্বরূপ প্রভুর ইচ্ছেয মিশরের রাজা শীশক রহবিয়ামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে জেরুশালেম আক্রমণ করলেন| 3 শীশকের সঙ্গে ছিল 12,000 রথসমূহ এবং 60,000 ঘোড়-সওযার সহ একটি বিশাল সেনাবাহিনী| শীশকের সেনাবাহিনীতে এত লূবীয, সুক্কীয,কূশীয় লোক ছিল যে তাদের গোনা যেত না| 4 জেরুশালেমে এসে উপস্থিত না হওয়া পর্য়ন্ত শীশক যিহূদার সমস্ত দূর্গ নগরীগুলি দখল করতে লাগলেন| 5 সেই সমযে, ভাব্বাদী শময়িয়, রহবিয়াম ও যিহূদার নেতৃবৃন্দ য়াঁরা শীশকের আক্রমণের কারণে জেরুশালেমে এসে জড়ো হয়েছিলেন তাদের কাছে গেলেন এবং বললেন, “প্রভু বলেছেন: ‘রহবিয়াম, তুমি ও যিহূদার লোকেরা আমায় ত্যাগ করেছো, অতএব একইভাবে আমিও তোমাদের শীশকের বিরুদ্ধে আমার সাহায্য ছাড়াই যুদ্ধ করতে ছেড়ে দিয়েছি|”‘ 6 তখন রহবিয়াম ও যিহূদার নেতারা বিনম্র হলেন, অনুতাপ করলেন এবং বললেন, “প্রভু তো ঠিক কথাই বলেছেন, আমরা পাপাত্মা|” 7 প্রভু যখন দেখলেন যে রাজা ও তাঁর নেতারা বিনীত হয়েছেন এবং অনুশোচনা করেছেন তখন তিনি শময়িয়কে বললেন, “যেহেতু রাজা ও নেতারা বিনীত হয়েছেন ও অনুতপ্ত হয়েছেন, আমি ওদের ধ্বংস করবো না, কিন্তু জেরুশালেমকে শীশকের সেনাবাহিনীর হাত থেকে মুক্তি দিয়ে আমার রোধর থেকে তাদের কযেকজনকে অব্যাহতি দেব| 8 কিন্তু তবুও, তারা তার দাস হবে, যাতে তারা বুঝতে পারে যে আমাকে সেবা করা আর একজন পার্থিব রাজাকে সেবা করার মধ্যে তফাত্ আছে|” 9 মিশররাজ শীশক জেরুশালেম আক্রমণ করে প্রভুর মন্দিরের সমস্ত ধনসম্পদ লুঠ তো করলেনই, রাজপ্রাসাদের যাবতীয় সম্পদও তিনি অপহরণ করে সঙ্গে নিয়ে গেলেন| রাজা শলোমনের বানানো সোনার ঢালগুলোও শীশক নিয়ে যান| 10 তার জায়গায় রহবিয়াম পিতলের ঢালগুলি রাখলেন এবং সেগুলো রাজপ্রাসাদের দ্বাররক্ষীদের দায়িত্বে রেখে দিলেন| 11 যখন তিনি প্রভুর মন্দিরে যেতেন তারা এগুলো বের করতো, পরে আবার দ্বাররক্ষীদের ঘরেই তুলে রাখতো| 12 যেহেতু রহবিয়াম বিনীত হয়েছিলেন এবং যা করেছিলেন তার জন্য অনুতপ্ত হয়েছিলেন, প্রভু তাঁর রোধ সরিয়ে নিলেন এবং তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করলেন না কারণ যিহূদায় কিছু ধার্মিকতা তখনও বাকী ছিল| 13 রাজা রহবিয়াম এমশঃ জেরুশালেমে নিজেকে ক্ষমতাশালী রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন| তিনি 41 বছর বয়সে রাজা হয়েছিলেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত অঞ্চলগুলির মধ্যে থেকে প্রভু যে স্থানটিতে নিজের নাম রাখার জন্য বেছে নিয়েছিলেন সেই জেরুশালেমে 17 বছর রাজত্ব করেছিলেন| রহবিয়ামের মা নয়মা ছিলেন একজন অম্মোনীয়া| 14 রহবিয়াম বিভিন্ন অসত্ কর্মে লিপ্ত হয়েছিলেন কারণ তিনি অন্তঃকরণ থেকে প্রভুকে অনুসরণ করেন নি| 15 তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষ পর্য়ন্ত রহবিয়াম যা কিছু করেছিলেন সেসবই ভাব্বাদী শময়িয় আর ভাব্বাদী ইদ্দোর লেখা পারিবারিক ইতিহাস থেকে জানতে পারা যায়| রহবিয়াম ও যারবিযামের রাজত্বকালে, দুজনের মধ্যে সব সমযেই যুদ্ধ লেগে থাকতো| 16 মৃত্যুর পর দায়ূদ নগরীতে রহবিয়ামকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাহিত করা হয়| তারপর তাঁর পুত্র অবিয নতুন রাজা হলেন|
1 যারবিযামের ইস্রায়েলে রাজত্বের 18 বছরের মাথায় অবিয ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন| 2 তিনি মোট তিন বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| অবিযর মা মীখায়া ছিলেন গিবিয়ার ঊরীযেলের কন্যা| অবিয আর যারবিযামের মধ্যেও যুদ্ধ হয়েছিল| 3 অবিযর সেনাবাহিনীতে 4,00,000 বীর সৈনিক ছিল| অবিয তাদের নিয়ে যুদ্ধে যান| ইতিমধ্যে যারবিযাম 8,00,000 বীর সেনা নিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে রইলেন| 4 অবিয ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলে সমারযিম পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে বললেন, “যারবিযাম আর ইস্রায়েলের অন্য সবাই, তোমরা আমার কথা শোনো| 5 তোমরা নিশ্চয়ই জানো যে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর দায়ূদ ও তাঁর উত্তরপুরুষদের সঙ্গে একটি দৃঢ় চুক্তিকরেছিলেন এবং চিরদিনের জন্য তাদের ইস্রায়েলের ওপর রাজা হিসেবে কর্তৃত্ব করার অধিকার দিয়েছিলেন| 6 কিন্তু নবাটের পুত্র যারবিযাম তাঁর প্রকৃত রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন| যারবিযাম আসলে দাযূদের পুত্র শলোমনের অধীনস্থ একজন ভৃত্য ছিল| 7 তারপর স্বার্থান্বেষী অপদার্থ কিছু লোক আর যারবিযাম মিলে রহবিয়ামের বিরুদ্ধে চএান্ত করেছিলেন| যেহেতু রহবিয়ামের তখন অল্প বয়স এবং য়থেষ্ট অভিজ্ঞতা ছিল না তাই তিনি যারবিযামকে বাধা দিতে পারেননি| 8 “আর এখন তোমরা সকলে মিলে ভাবছো দাযূদের সন্তানদের দ্বারা শাসিত প্রভুর রাজ্যকে যুদ্ধে হারাবে! তোমাদের সঙ্গে অনেক লোক আর দেবতা হিসেবে যারবিযামের তৈরী ঐ ‘সোনার বাছুরগুলো’ আছে| 9 তোমরা প্রভুর যাজক-লেবীয় আর হারোণের বংশধরদের তাড়িয়ে দিয়ে পৃথিবীর অন্যান্য জাতির মতো নিজেরা নিজেদের যাজক বেছে নিয়েছো| এখন যে খুশি সেই একটা ষাঁড় আর সাতটা মেষ এনে এইসব মূর্ত্তিগুলোর যাজক হয়ে বসতে পারে| 10 “কিন্তু আমাদের প্রভুই আমাদের ঈশ্বর| আমরা যিহূদাবাসীরা কখনও প্রভুকে অবজ্ঞা করিনি বা তাঁকে পরিত্যাগ করিনি| আমাদের এখানে কেবলমাত্র হারোণের বংশধররা লেবীয়দের প্রভুর সেবা করেন| 11 তাঁরাই সকাল সন্ধ্যায হোমবলি উত্সর্গ করেন, ধুপধূনো দিয়ে থাকেন এবং মন্দিরের সোনার টেবিলে তাঁরাই রুটি নিবেদন করেন আর সোনার বাতিদানগুলোর যত্ন নিয়ে থাকেন যাতে তাদের আলো কখনও নিভে না যায়| আমরা পরম শ্রদ্ধা ভরে আমাদের প্রভুর সেবা করি, কিন্তু তোমরা তাঁকেই পরিত্যাগ করেছ| 12 প্রভু তাই আমাদের সহায়| তিনিই আমাদের প্রকৃত শাসক| তাঁর যাজকরাও আমাদের অনুগত| তাঁরা যখন কাড়া-নাকাড়া, শিঙা বাজান প্রভুর ভক্তরা তাঁর কাছে আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন| শোনো ইস্রাযেলবাসীরা, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো না| তোমরা কখনোই সফল হতে পারবে না|” 13 কিন্তু যারবিযাম অবিযর সেনাবাহিনীর পেছনে লুকিয়ে থাকার জন্য এবং তাদের পেছন থেকে আক্রমণ করবার জন্য কিছু সৈন্য পাঠিয়ে দিলেন| সুতরাং যারবিযামের মুখ্য় সৈন্যদল, অবিযর সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হল এবং তিনি তাঁর পেছনেও অতর্কিত আক্রমণের জন্য সৈন্য মোতাযেন রাখলেন| 14 তখন অবিযর সেনাবাহিনী বুঝতে পারল যে সামনে পেছনে দুদিক থেকেই যারবিযামের সেনারা তাদের ঘিরে ফেলেছে আর যিহূদার লোকরা এবং প্রভুর যাজকরা সকলে মিলে শিঙা বাজাচ্ছে, প্রভুর উদ্দেশ্যে সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করছে| 15 তখন অবিযর সেনারা যুদ্ধের হুংকার দিতে লাগলো এবং শেষ পর্য়ন্ত প্রভু যারবিযামের ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীকেই পরাজিত করলেন| 16 ইস্রায়েলীয়রা, যিহূদাদের থেকে পালাতে লাগলো| 17 ইস্রায়েলের 5,00,000 বাছাই করা সৈন্য অবিয এবং তার সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হল| 18 অর্থাত্ ইস্রায়েলীয়রা পরাজিত হল এবং যিহূদাদের জয় হল| যিহূদারা যুদ্ধে জিতলো কারণ তারা তাদের পূর্বপুরুষের আদরনীয ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করেছিল| 19 অবিযর সেনাবাহিনী যারবিযামের সেনাবাহিনীকে তাড়া করে বের করে দিল এবং যারবিযামের কাছ থেকে বৈথেল, য়িশানা, ইফ্রোণ শহরগুলি এবং চারপাশের গ্রামগুলি দখল করে নিল| 20 অবিযর জীবদ্দশায় যারবিযাম আর তার ক্ষমতা ফিরে পান নি| প্রভু যারবিযামকে আঘাত করেছিলেন এবং তিনি মারা গিয়েছিলেন| 21 কিন্তু অবিয এমশঃ শক্তিশালী হয়ে ওঠেন| তিনি 14 জন মহিলাকে বিয়ে করেন আর তাঁর 22 জন পুত্র ও 16 জন কন্যা হয়েছিল| 22 অবিয যা কিছু করেছিলেন এবং যেরকম ব্যবহার করেছিলেন তা ভাব্বাদী ইদ্দোরের লেখা কাহিনী থেকে জানতে পারা যায়|
1 অবিযর মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাহিত করার পর অবিযর পুত্র রাজা আসা তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন| আসার রাজত্বকালে দেশে দশ বছরের জন্য শান্তি বিরাজ করেছিল| 2 আসা নিষ্ঠাভরে তাঁর প্রভুর সেবা করেছিলেন| 3 তিনি বিদেশীদের বেদী এবং উচ্চস্থলগুলি সরিয়ে দিলেন এবং তিনি পাথরের মূর্ত্তিগুলি এবং আশেরার খুঁটিগুলি ভেঙ্গে দিলেন| 4 তিনি লোকদের তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের বিধি এবং আদেশসমূহ পালন করতে বলেছিলেন| 5 আসা যিহূদার সবকটি শহরের উঁচু বেদীগুলি এবং সূর্য় মূর্ত্তিগুলি ভেঙ্গে দিয়েছিলেন| যে কারণে প্রভুর আশীর্বাদে তাঁর রাজত্বকালে রাজ্যের সর্বত্র শান্তি বিরাজ করতো| 6 শান্তির সময় আসা শহরগুলোকে শক্তিশালী করেছিলেন যখন দেশ যুদ্ধ থেকে মুক্ত ছিল, কারণ প্রভু তাকে শান্তি দিয়েছিলেন| 7 আসা যিহূদার লোকদের ডেকে বললেন, “এসো আমরা এই সব শহরগুলো পোক্ত করে বানিয়ে এগুলোর চারপাশ দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দিই| তারপর প্রহরা স্তম্ভ আর গরাদ বসানো দরজা বানাই| আমাদের প্রভুকে অনুসরণ করার জন্যই আজ এই শহর আমাদের হয়েছে| প্রভু আমাদের শান্তি দিয়েছেন|” আসা ও তাঁর প্রজারা তাঁদের এই কাজে সফল হয়েছিলেন| 8 আসার সেনাবাহিনীতে যিহূদা জনগোষ্ঠীর মোট 3,00,000 বল্লমধারী সেনা ও বিন্যামীন জনগোষ্ঠীর 2,80,000 ধনুর্ধর সেনা ছিল| যিহূদার সৈনিকরা বল্লম ও ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করতেন| বিন্যামীনের সৈনিকরা ছোট ছোট ঢাল এবং তীরধনুক নিয়ে যুদ্ধ করতে পারতেন| এঁরা সকলেই ছিলেন সাহসী ও বীর য়োদ্ধা| 9 কূশ দেশের সেরহ 10,00,000 সেনা ও 300 রথ নিয়ে আসার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসে মারেশা নগর পর্য়ন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন| 10 আসাও তাঁর সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে মারেশার সফাথা উপত্যকায এসে উপস্থিত হলেন| 11 আসা তাঁর প্রভু ঈশ্বরকে ডেকে বললেন, “হে প্রভু, শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্বলদের একমাত্র তুমিই সাহায্য করতে পারো|আমাদের প্রভু, ঈশ্বর তুমি আমাদের সহায় হও| আমরা তোমার ওপর নির্ভর করছি| প্রভু তোমার নাম নিয়ে আমরা এই বিশাল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি| তুমি আমাদের ঈশ্বর| দেখো, তোমার সেনাবাহিনীকে কেউ যেন হারাতে না পারে|” 12 প্রভু তখন আসার সেনাবাহিনীর হাতে কূশ দেশের সেনাবাহিনীর পরাজয় সাধন করলেন| সেই কূশ সেনারা পালিয়ে গেল| 13 আসার সেনারা তাদের ধাওযা করে গরার পর্য়ন্ত তাড়া করল| যুদ্ধে প্রভুর বাহিনীর এতো বেশী সংখ্য়ক কূশ সেনা মারা গিয়েছিল যে তাদের পক্ষে আর একত্রিত হয়ে বাহিনী তৈরী করে যুদ্ধ করা সম্ভব ছিল না| আসা আর তাঁর সেনাবাহিনী শএুপক্ষের ফেলে যাওয়া বহু মূল্যবান জিনিষপত্র উদ্ধার করে দখল করলেন| 14 তারা গরারের পাশ্ববর্তী সমগ্র শহরকে যুদ্ধে পরাজিত করলেন| এই সব শহরের বাসিন্দারা প্রভুর কোপানলের ভয়ে ভীত ছিল| আসার সেনাবাহিনী এইসব শহর থেকে বহু দুর্মূল্য জিনিসপত্র দখল করে নিয়েছিল| 15 এরপর তারা মেষপালকদের ছাউনি আক্রমণ করে সেখান থেকে বহু সংখ্য়ক মেষ ও উট কেড়ে নিয়ে আবার জেরুশালেমে ফিরে গেল|
1 এখন ঈশ্বরের আত্মা ওবেদের পুত্র অসরিয়র ওপর এল| 2 তিনি আসার সঙ্গে দেখা করে বললেন, “আসা আর যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত লোকরা তোমরা শোনো! তোমরা যদি প্রভুকে অনুসরণ করো তিনি তোমাদের সহায় থাকবেন| তোমরা যদি সত্যিই তাঁকে পেতে চাও, তোমরা তাঁকে পাবে| কিন্তু, তোমরা যদি তাঁকে পরিত্যাগ করো, তিনিও তোমাদের পরিত্যাগ করবেন| 3 দীর্ঘকাল ইস্রায়েলে কোনো প্রকৃত ঈশ্বর, কোনো শিক্ষক, যাজক বা বিধি ছিল না| 4 কিন্তু যখন ইস্রায়েলীয়রা সঙ্কটের সন্মুখীন হল, তারা আবার প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের দিকে মুখ ফিরিযে তাকালো| তারা তাঁকে খুঁজলো এবং তিনি তাদের তাকে খুঁজতে দিলেন| 5 সেই সমযে, সমস্ত জাতিগুলোর মধ্যে একটি বিরাট অশান্তি চলছিল| যে কোন একজন ব্যক্তির পক্ষে নিরাপদে চলাফেরা করা প্রায অসম্ভব ছিল| 6 জাতিগুলি অপর জাতির সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল, এবং শহরগুলি অন্য শহরগুলির সঙ্গে লড়াই করছিল, যার ফলে সকলেই এক নিদারুণ তাণ্ডবের মধ্যে ছিল, কারণ ঈশ্বর সমস্ত রকম অশান্তি দিয়ে তাদের ওপর আঘাত হেনেছিলেন| 7 কিন্তু শোনো আসা, তুমি আর যিহূদা ও বিন্যামীনের লোকেরা সবরকম পরিস্থিতিতেই দৃঢ় থেকো| কখনও কোনো দুর্বলতা প্রকাশ করো না| তোমাদের এই দৃঢ় থাকার উপযুক্ত প্রতিদান তোমরা নিশ্চয়ই পাবে|” 8 আসা ওবেদের এইসব কথা শুনে খুবই অনুপ্রাণিত বোধ করলেন| তিনি যিহূদার ও বিন্যামীনের সমগ্র অঞ্চল থেকে ও তাঁর দখল করা ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের সমস্ত শহরগুলি থেকে যাবতীয় ঘৃণ্য মূর্ত্তিগুলি সরিয়ে দিলেন| প্রভুর মন্দিরের দালানের সামনের প্রভুর বেদীটিও তিনি মেরামত্ করলেন| 9 এরপর, আসা যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত লোককে ও ইফ্রয়িম, মনঃশি ও শিমিযোন পরিবারগোষ্ঠী যারা ইস্রাযেল ত্যাগ করে যিহূদায় বাস করতে গিয়েছিলেন তাদের সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করলেন| তাদের মধ্যে অনেকেই প্রভুকে আসার পক্ষ নিতে দেখেই ইস্রাযেল ত্যাগ করে গিয়েছিল| 10 আসা আর এই সমস্ত লোকরা তাঁর রাজত্বের 15তম বছরের তৃতীয় মাসে জেরুশালেমে একত্রিত হল| 11 সেই সময় তারা তাদের শএুদের কাছ থেকে আনীত লুট দ্রব্য থেকে প্রভুর উদ্দেশ্যে 700 ষাঁড় এবং 7,000 মেষ ও ছাগল উত্সর্গ করলেন| 12 সেই সমযে তাঁরা সর্বান্তঃকরণে প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের সেবা করবেন বলে তাঁদের নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করলেন| 13 ঠিক হল যে ব্যক্তি প্রভু ঈশ্বরের সেবা করতে প্রতিবাদ করবে তা সে য়তো গণ্যমান্য হোক বা সাধারণ কেউ হোক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে| এমনকি মহিলা হলেও তাকে মার্জনা করা হবে না| 14 তারপর আসা ও সবাই মিলে সমস্বরে প্রভুর সামনে শপথ করলো এবং শিঙা ও কাড়া-নাকাড়া বাজালো| 15 অতএব যিহূদার সমস্ত লোক আনন্দ করল কারণ তারা সর্বান্তঃকরণে একটি শপথ নিল, সম্পূর্ণ বাসনা নিয়ে তাঁর অনুসরণ করেছিল এবং তাঁকে খুঁজে পেয়েছিল| তাই প্রভু তাদের সারা দেশে শান্তি দিয়েছিলেন| 16 রাজা আসা তাঁর মা মাখাকে রাণীর পদ থেকে অপসারণ করেছিলেন যেহেতু তিনি আশেরা মূর্ত্তির জন্য পূজার বস্তু হিসাবে ভয়ঙ্কর খুঁটিগুলোর একটা নিজে পুঁতেছিলেন| তিনি সেই খুঁটিটা উপড়ে ফেলে টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে কিদ্রোণ নদীতে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিলেন| 17 যিহূদা থেকে উঁচু বেদীগুলো সরানো না হলেও আসা আজীবন সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন| 18 এছাড়াও আসা ঈশ্বরের মন্দিরে তাঁর ও তাঁর পিতার পক্ষ থেকে বহু মূল্যবান সোনা ও রূপোর সামগ্রী দান করেছিলেন| 19 আসার রাজত্বের 35 বছর পর্য়ন্ত কোনো যুদ্ধ হয় নি|
1 আসার রাজত্বের 36 বছরের মাথায় ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদা আক্রমণ করেছিলেন| তিনি রামা শহরটি নির্মাণ করে শহরটিকে দুর্গে পরিণত করেছিলেন, যাতে উত্তরের রাজ্যগুলির লোকরা যিহূদার রাজা আসার কাছে না যায়| 2 তখন আসা প্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ থেকে সোনা ও রূপো নিলেন এবং দম্মেশকে অরাম দেশের রাজা বিন্হদদের কাছে দূত মারফত্ তা পাঠালেন, ও বললেন, 3 “আমার পিতা ও আপনার পিতার মধ্যে যেরকম চুক্তি হয়েছিল, চলুন আমরাও নিজেদের মধ্যে সেরকম একটা চুক্তি করি| আমি আপনার কাছে সোনা ও রূপো পাঠাচ্ছি| পরিবর্তে আপনি ইস্রাযেলরাজ বাশার সঙ্গে আপনার চুক্তি ভঙ্গ করুন যাতে তিনি আমাকে আর বিরক্ত না করেন এবং আমাকে নিজের মতো থাকতে দেন|” 4 বিন্হদদ রাজা আসার প্রস্তাবে রাজী হয়ে ইস্রায়েলের শহরগুলো আক্রমণ করার জন্য তাঁর সেনাবাহিনীর সেনাপতিদের নির্দেশ দিলেন| এইসব সেনাপতিরা ইযোন, দান, আবেল-মযিম ও নপ্তালি শহরগুলি, যেখানে খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা হতো আক্রমণ করলেন| 5 যখন বাশা এই আক্রমণের খবর পেলেন তিনি রামার দুর্গ বানানোর কাজ বন্ধ করে চলে যেতে বাধ্য হলেন| 6 তখন আসা যিহূদার সমস্ত পুরুষদের নিয়ে বাশা রামা নগর বানানোর জন্য যে সব পাথর আর কাঠ ব্যবহার করেছিলেন, সেইগুলো নিয়ে এলেন এবং গেবা ও মিস্পা দুটো দুর্গসহ শহর তৈরী করলেন| 7 এসমযে ভাব্বাদী হনানি যিহূদার রাজা আসার সঙ্গে দেখা করতে এসে বললেন, “আসা তুমি সাহায্যের জন্য তোমার প্রভু ঈশ্বরের ওপর নয় অরাম রাজের ওপর নির্ভর করেছিলে| এই কারণে, সিরিযার রাজার সৈন্যদলের ওপর তুমি তোমার নিয়ন্ত্রণ হারাবে| 8 কূশীয় ও লূবীযদের বহু রথ ও অশ্বারোহী সৈন্যসহ বিশাল সেনাবাহিনী ছিল, কিন্তু তুমি প্রভুর ওপর নির্ভর করেছিলে বলে তিনি তোমাকে ওদের পরাজিত করতে দিয়েছিলেন| 9 সমস্ত পৃথিবীতে খুঁজে বেড়ায প্রভুর দৃষ্টি, যে সমস্ত ব্যক্তি তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত, তিনি তাদের মধ্য দিয়েই তাঁর ক্ষমতা প্রদর্শন করেন| আসা তুমি মূর্খের মতো কাজ করেছো অতএব এরপর থেকে তোমায় শুধুই যুদ্ধ করে যেতে হবে|” 10 একথা শুনে, আসা হনানির ওপর রেগে গিয়ে তাঁকে কারাগারে পুরে দিলেন এবং কযেকজনের সঙ্গে আসা নিষ্ঠুর ব্যবহারও করেছিলেন| 11 আসা তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি যা কিছু করেছিলেন সেসবই যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 12 তাঁর রাজত্বের 39 বছরের মাথায় আসার পাযে মারাত্মক ধরণের রোগ হয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি প্রভুর সাহায্য প্রার্থনা না করে শুধুমাত্র ডাক্তারদের দিয়েই চিকিত্সা করিযেছিলেন| 13 ফলস্বরূপ 41 বছর রাজত্ব করার পর অবশেষে তাঁর মৃত্যু হল| 14 মৃত্যুর পর আসাকে তাঁর পূর্বপুরুষদের পাশে দায়ূদ নগরীতে তাঁর জন্য বানিয়ে রাখা সমাধিস্তূপে সমাহিত করা হল| লোকরা সমাধিটিকে বিভিন্ন ধরণের মশলাপাতি ও সুগন্ধী আতরে ভরিয়ে দিয়েছিল এবং তাঁর সম্মানার্থে এক বিশাল আগুন বালিয়েছিল|
1 আসার জায়গায় যিহূদার নতুন রাজা হলেন তাঁর পুত্র যিহোশাফট| ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য যিহোশাফট যিহূদাকে সুদৃঢ় করেছিলেন| 2 যিহূদার যে সমস্ত শহরকে দুর্গে পরিণত করা হয়েছিল সেই সবকটি শহরে তিনি সেনাবাহিনী মোতাযেন করেছিলেন| এছাড়া তিনি যিহূদায় এবং তাঁর পিতা আসার দখল করা ইফ্রয়িমের শহরগুলিতেও সৈন্যবাহিনী মোতাযেন করেছিলেন| 3 প্রভু য়িহোশাফটের সহায় হয়েছিলেন কারণ তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দাযূদের মতোই বাধ্যভাবে জীবনযাপন করতেন এবং বাল মূর্ত্তিসমূহের পূজো করেন নি| 4 পরিবর্তে তিনি তাঁর পিতা, আসার ঈশ্বরকে অনুসরণ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলের উত্তরাঞ্চলের লোকদের মতো জীবনযাপন করেন নি| যিহোশাফট প্রভুর বিধি ও নির্দেশ অনুযায়ীজীবনযাপন করতেন| 5 প্রভু তাই যিহূদা রাজ্যে য়িহোশাফটের ক্ষমতাকে দৃঢ় করেছিলেন| সমস্ত লোক তাঁর জন্য উপহার ও উপঢৌকন আনত, সে কারণে তিনি বহু খ্যাতি ও সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন| 6 প্রভুর আজ্ঞানুবর্তী হয়ে জীবনযাপন করতে যিহোশাফট কৃতসংকল্প ছিলেন| তিনি ভণ্ড মূর্ত্তি আশেরার খুঁটি ও যাবতীয় উঁচু পূজোর বেদী নির্মূল করেছিলেন| 7 যিহোশাফট তাঁর রাজত্বের তৃতীয় বছরে যিহূদার শহরগুলিতে শিক্ষাদানের জন্য তাঁর বিন্-হযিল, ওবদিয, সখরিয়, নথনেল, মীখায় প্রমুখ আধিকারিকদের পাঠান| 8 এঁদের সঙ্গে তিনি কিছু লেবীয় পাঠিয়েছিলেন| তারা হল: শময়িয়, নথনিয, সবদিয়, অসাহেল, শমীরামোত্, য়িহোনাথন, অদোনিয, টোবিয এবং টোব্-অদনীয এবং যাজক ইলীশামা ও যিহোরাম| 9 এঁরা সকলে মিলে যিহূদার সমস্ত শহর পর্য়টন করতে করতে প্রভুর বিধিপুস্তক অনুযায়ীলোকেদের শিক্ষাদান করেছিলেন| 10 যিহূদার চারপাশের অঞ্চলের বসবাসকারী লোকরা প্রভুর ভয়ে ভীত থাকায় য়িহোশাফটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি| 11 কিছু পলেষ্টীয় ব্যক্তি য়িহোশাফটের জন্য রূপো ও অন্যান্য উপহার এনেছিলেন কারণ তারা তাঁর ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন ছিল| আরবীযরা যিহোশাফটকে 7,700টি মেষ ও 7,700টি ছাগল উপহার দিয়েছিল| 12 যিহোশাফট এমে এমে আরো শক্তি সঞ্চয় করেন এবং যিহূদার প্রত্যেকটা শহরে দুর্গ ও গোলাঘর বানান| 13 এই সমস্ত শহরে তিনি নিয়মিত দৈনন্দিন ব্যবহার্য় জিনিসপত্র পাঠাতেন| এছাড়া তিনি জেরুশালেমে যুদ্ধ বিদ্য়ায পারদর্শী সৈনিক রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন| 14 এই সমস্ত সৈনিকদের নাম তাদের পরিবারগোষ্ঠীর ইতিহাস থেকে জানতে পারা যায়|সৈনিকদের মধ্যে যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী থেকে অদন ছিলেন 3,00,000 সেনার অধ্যক্ষ| 15 য়িহোহাননের অধীনে ছিল 2,80,000 সেনা| 16 সিখির পুত্র অমসিয, প্রভুর সেবায একজন স্বেচ্ছাসেবক, 2,00,000 ধনুর্ধর সেনার সেনাপতি ছিলেন| 17 বিন্যামীনের জাতি থেকে সেনাপতি ইলিয়াদার অধীনে ছিল 2,00,000 ধনুর্ধর সৈন্য| এরা সকলে তীরধনুক ও ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করতো| ইলিয়াদা নিজেও ছিলেন সাহসী য়োদ্ধা| 18 য়িহোশাফটের অধীনে ছিল 1,80,000 পারদর্শী য়োদ্ধা| 19 এরা ছাড়াও রাজা য়িহোশাফটের অধীনে যিহূদার প্রত্যেকটা দুর্গে আরো বহু লক্ষ সৈনিক কাজ করতেন|
1 যিহোশাফট প্রভুত পরিমাণে সম্পদ ও সম্মানের অধিকারী হয়েছিলেন| তিনি ঐ দুটি রাজ্যের মধ্যে একটি সন্ধি স্থাপনের জন্য রাজা আহাবের সঙ্গেও একটি ব্বৈাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন| 2 কযেকবছর পরে যখন তিনি শমরিয়া শহরে রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আহাব তাঁর ও তাঁর সঙ্গের লোকদের সম্মানার্থে বহু মেষ ও গরু বলিদান করেন| আহাব যিহোশাফটকে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে উত্সাহ দিয়েছিলেন| 3 আহাব যিহোশাফটকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি আমার সঙ্গে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে যাবেন?” যিহোশাফট, আহাবকে উত্তর দিয়েছিলেন, “আপনার আর আমার মধ্যে কোনো পার্থক্য় নেই, আমার প্রজারা তো আপনারও প্রজা| আমরা অবশ্যই আপনার সঙ্গে যুদ্ধে য়োগ দেব|” 4 যিহোশাফট আরো বললেন, “প্রথমে প্রভুর সন্মতি চাওযা যাক|” 5 রাজা আহাব তাই 400 জন ভাব্বাদীকে জড়ো করলেন| তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা কি রামোত্-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করতে পারি?” তখন ভাব্বাদীরা বললেন, “যান ঈশ্বর আপনাদের রামোত্-গিলিয়দকে হারাতে সাহায্য করবেন|” 6 কিন্তু যিহোশাফট একথায় সন্তুষ্ট না হয়ে বললেন, “আমার প্রভুর কোনো ভাব্বাদী কি এখানে উপস্থিত আছেন? তাহলে তাঁর মাধ্যমে আমাদের প্রভুর সম্মতি নেওয়া উচিত্ |” 7 তখন রাজা আহাব যিহোশাফটকে জানালেন, “একজন আছেন য়াঁর মাধ্যমে আমরা প্রভুকে রশ্ন করতে পারি| কিন্তু এই লোকটাকে আমার মোটেই পছন্দ নয় কারণ ও কখনও প্রভুর কাছ থেকে জেনে আমায় কোনো ভাল কথা বলেনি| ও সবসময় আমার সম্পর্কে খারাপ ভবিষ্যদ্বাণী করে| এ হল য়িম্লের পুত্র মীখায়|” যিহোশাফট বললেন, “আহাব আপনার মুখে একথা শোভা পায় না|” 8 রাজা আহাব তখন তাঁর এক কর্মচারীকে ডেকে বললেন, “তাড়াতাড়ি গিয়ে য়িম্লের পুত্র মীখায়কে এখানে ডেকে নিয়ে এসো” 9 ইস্রাযেলরাজ আহাব এবং যিহূদারাজ যিহোশাফট দুজনেই তখন তাঁদের রাজকীয পোশাক পরে শমরিয়া শহরের সামনের দরজার কাছে এক শস্য মাড়াইযের জায়গায় নিজেদের সিংহাসনে বসেছিলেন| ঐ 400 জন ভাব্বাদী তাদের সামনে ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন| 10 কনানার পুত্র সিদিকিয লোহা দিয়ে কযেকটা শিং বানিয়ে বলল, “প্রভু বলেছেন: ‘ধ্বংস না হওয়া পর্য়ন্ত আপনারা অরামীয়দের এই শিংগুলি দিয়ে বিদ্ধ করে যাবেন|”‘ 11 সমস্ত ভাব্বাদীরা একই সুরে কথা বলতে লাগলেন| তারা বললেন, “আপনারা রামোত্-গিলিয়দে যান| প্রভুর সহায়তায আপনারা নিশ্চয়ই অরামীয়দের পরাজিত করতে পারবেন|” 12 এদিকে বার্তাবাহকরা মীখায়কে গিয়ে বললেন, “শুনুন মীখায়, সমস্ত ভাব্বাদীরা রাজাদের যুদ্ধ জয়ের কথা শুনিয়েছেন| আপনিও এবার গিয়ে ভাল ভাল কথা বলুন|” 13 প্রত্যুত্তরে মীখায় বললেন, “জীবন্ত প্রভুর দিব্য, আমার ঈশ্বর যা বলেন আমি তাই বলব|” 14 তারপর মীখায় রাজা আহাবের কাছে এসে উপস্থিত হলেন| রাজা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “মীখায় আমরা কি রামোত্-গিলিয়দে যুদ্ধ করতে যেতে পারি?” মীখায় উত্তর দিলেন, “যান আক্রমণ করুন| ঈশ্বর আপনাদের শএুকে পরাজিত করতে সাহায্য করবেন|” 15 রাজা আহাব তখন মীখায়কে বললেন, “বহুবার আমি তোমাকে বলেছি, প্রভুর নামে আমাকে সব সমযে সত্যি কথা বলবে!” 16 একথা শুনে মীখায় বললেন, “আমি দেখলাম ইস্রায়েলের লোকরা মেষপালক ছাড়া মেষের পালের মত পাহাড়গুলোর ওপর ছড়িয়ে পড়েছে| প্রভু বলেছেন: ‘এদের নেতৃত্ব দেবার মতো কেউ নেই, প্রত্যেকে যে যার বাড়িতে ফিরে যাক|”‘ 17 ইস্রায়েলের রাজা আহাব যিহোশাফটকে বললেন, “দেখেছেন, আমি আগেই আপনাকে বলেছিলাম মীখায় কখনও আমার সম্পর্কে ভাল কিছু বলেন না| শুধুই আমার অপবাদ দেন|” 18 মীখায় বললেন, “প্রভুর বার্তা শুনুন| আমি প্রভুকে তাঁর সিংহাসনে বসে থাকতে দেখেছি আর স্বর্গের সেনাবাহিনী তাঁকে দুদিকে ঘিরে রেখেছিল| 19 প্রভু জিজ্ঞেস করলেন: ‘তোমাদের মধ্যে কে রামোত্-গিলিয়দে যাবে এবং আহাবকে প্রতারণা করে হত্যা করবে?’ তখন প্রভুর চারপাশে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তাদের একেকজন একেক রকম কথা বলতে লাগলেন| 20 শেষ অবধি এক আত্মা এসে প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে বললো, ‘আমি যাবো আহাবের সঙ্গে ছলনা করতে|’ প্রভু সেই আত্মাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি ভাবে?’ 21 তখন সেই আত্মা বললো, ‘আমি যাবো এবং আহাবের ভাব্বাদীদের ভর করব এবং তাদের দিয়ে মিথ্য়া ভবিষ্যদ্বাণী করাব|’ তখন প্রভু বললেন, ‘যাও আহাবকে ছলনা করার কাজে তুমি অবশ্যই সফলকাম হবে|’ 22 “দেখুন আহাব, প্রভু আপনার ভাব্বাদীদের মুখ দিয়ে মিথ্য়া ভাষণ করিযেছেন| আসলে প্রভু আপনার অমঙ্গল সাধন করতে চান|” 23 তখন কনানার পুত্র সিদিকিয গিয়ে মীখায়ের মুখে আঘাত করে বলল, “মীখায়, আমাকে বল প্রভুর আত্মা কেমন করে আমাকে ছেড়ে গেল এবং তার বদলে তোমার সঙ্গে কথা বলল?” 24 মীখায় উত্তর দিলেন, “সিদিকিয এ কথার উত্তর তুমি তখন পাবে যখন নিজের প্রাণ বাঁচাতে তোমায একটা চোরা কুঠুরিতে গিয়ে লুকোতে হবে|” 25 রাজা আহাব হুকুম দিলেন, “মীখায়কে আটক কর এবং তাকে শহরের শাসনকর্তা আমোনার কাছে এবং রাজপুত্র যোয়াশের কাছে পাঠিয়ে দাও| 26 আর ওদের জানিয়ে দাও আমি মীখায়কে কারাগারে পুরতে বলেছি| আমি যুদ্ধ থেকে নিরাপদে ফিরে না আসা পর্য়ন্ত যেন ওকে জল আর শুকনো রুটি ছাড়া আর কিছু খেতে না দেওয়া হয়|” 27 প্রত্যুত্তরে মীখায় বললেন, “আহাব আপনি যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসেন তাহলে বুঝবো প্রভু কোনোদিনই আমার মুখ দিয়ে কোনো কথা বলেননি| তোমরাও সকলে মন দিয়ে আমার একথা শুনে রাখো|” 28 অতঃপর ইস্রায়েলের রাজা আহাব আর যিহূদার রাজা যিহোশাফট দুজনে মিলে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে গেলেন| 29 রাজা আহাব যিহোশাফটকে বললেন, “যুদ্ধে যাবার আগে আমি ছদ্মবেশ পরে যেতে চাই| আপনি আপনার পোশাকেই চলুন|” তখন ইস্রায়েলের রাজা আহাব ছদ্মবেশ ধারণ করলেন এবং তারপর দুজনে যুদ্ধে গেলেন| 30 অরামের রাজা তাঁর রথবাহিনীর সেনাপতিদের আদেশ দিলেন, “কোন সৈন্যর সঙ্গে যুদ্ধ কর না| তোমরা শুধু ইস্রায়েলের রাজা আহাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো|” 31 রথ বাহিনীর সেনাপতিরা প্রথমে যিহোশাফটকে দেখে ভাবলেন, “ঐ বুঝি ইস্রায়েলের রাজা আহাব!” তারা সকলে মিলে যেই যিহোশাফটকে আক্রমণ করতে গেল যিহোশাফট সাহায্যের জন্য প্রভুকে চিত্কার করে ডাকলেন| ঈশ্বর রথের সেনাপতিদের অভিমুখ য়িহোশাফটের দিক থেকে ঘুরিযে দিলেন| 32 যখন রথের সেনাপতিরা যিহোশাফটকে দেখল তারা হৃদয়ঙ্গম করল যে তিনি আসলে ইস্রায়েলের রাজা আহাব নন, তাই তারা আর তাঁকে তাড়া করলো না| 33 ইতিমধ্যে, একজন সেনা তার ধনুক থেকে একটা তীর লক্ষ্যহীনভাবে ছুঁড়েছিল এবং সেই তীরটা ইস্রায়েলের রাজা আহাবের গায়ে গিয়ে বিঁধলো| তীরটা তাঁর শরীরের এমন জায়গায় বিঁধল যেখানটা বক্ষত্রাণ দিয়ে ঢাকা ছিল না| আহাব তাঁর রথের সারথীকে বললেন, “রথের মুখ ঘোরাও এবং আমাকে যুদ্ধ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাও| আমি আহত|” 34 সেদিন যুদ্ধ এমশঃ প্রচণ্ড হয়ে উঠল| সন্ধ্যা পর্য়ন্ত রাজা আহাব তাঁর রথে অধিষ্ঠিত থেকে যুদ্ধের সামনা করলেন| তারপর সূর্য়াস্তের সময় তিনি মারা গেলেন|
1 যিহূদার রাজা যিহোশাফট অক্ষত অবস্থায় জেরুশালেমে তাঁর বাড়িতে ফিরে এলেন| 2 ভাব্বাদী হনানির পুত্র যেহূ য়িহোশাফটের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| তিনি যিহোশাফটকে বললেন, “আপনি কেন যেসব ব্যক্তিরা প্রভুকে ঘৃণা করেন সেই সমস্ত অসত্ ব্যক্তিদের সাহায্য করেছেন? এ কারণেই প্রভু আপনার ওপর রুদ্ধ হয়েছেন| 3 তা সত্ত্বেও আপনার মধ্যে এখনও ভাল কিছু আছে যেহেতু আপনি সর্বান্তঃকরণে ঈশ্বরকে খুঁজতে দৃঢ়সংকল্প করেছেন এবং এদেশ থেকে আশেরার খুঁটিগুলোও সরিয়ে দিয়েছেন|” 4 জেরুশালেমে থাকাকালীন যিহোশাফট আবার বের্-শেবা থেকে পার্বত্য দেশ ইফ্রয়িম পর্য়ন্ত লোকদের সঙ্গে মিশলেন এবং তাদের প্রভুর কাছে, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের কাছে ফিরিযে আনলেন| 5 যিহোশাফট যিহূদার প্রত্যেকটা দুর্গের জন্য আলাদা আলাদা বিচারক নির্বাচন করে তাঁদের বলেছিলেন, 6 “আপনারা অত্যন্ত সতর্কভাবে নিজেদের কাজ করবেন| কারণ আপনারা যে বিচার করবেন তা কোনো ব্যক্তির জন্য নয়, বয়ং প্রভুর হয়ে আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্তগুলি লোকদের দেবেন| আর আমি নিশ্চিত, যখন আপনারা কোন সিদ্ধান্ত নেবেন প্রভু বয়ং আপনাদের সহায় হবেন| 7 প্রভু কিন্তু নিরপেক্ষ তাঁর চোখে সকলেই সমান| ঘুষ দিয়ে তাঁর বিচার বদলানো যায় না| আপনারা সকলে এ কথা মাথায় রেখে, প্রভুর শক্তি ও রোধর কথা স্মরণ করে নিজেদের কাজ করবেন|” 8 জেরুশালেমে বিচারক হিসেবে কাজ করার জন্য যিহোশাফট কযেকজন লেবীয়, কিছু যাজক ও ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠী নেতাদের বেছে নিয়েছিলেন| এদের ওপর দায়িত্ব ছিল প্রভুর বিধি নির্দেশ মেনে জেরুশালেমের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যার প্রতিবিধান করা| 9 যিহোশাফট এদের বলেছিলেন, “প্রভুর ভয়ে তোমাদের কর্ত্তব্য়ে তোমাদের একনিষ্ঠ হতে হবে, সমস্ত হৃদয় দিয়ে তা করতে হবে| 10 তোমাদের বিভিন্ন ধরণের মামলা যেমন খুন-জখম, জুযাচুরি, আইন, বিধি-নির্দেশ অমান্য করার সন্মুখীন হতে হবে| আর এসব মামলা আসবে এই সব শহরে বসবাসকারী তোমাদেরই সহ নাগরিকদের মধ্যে থেকে| তোমরা সবসমযেই লোকদের প্রভুর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করার বিষযে সতর্ক করে দেবে| তোমরা যদি নিজেদের কর্তব্য়ের ব্যাপারে নিষ্ঠাবান না হও তাহলে প্রভুর রোধ তোমাদের এবং তোমাদের সহ নাগরিকদের ওপর গিয়ে পড়বে| কিন্তু যা বললাম তা যদি তোমরা করো তাহলে ভয়ের কোনো কারণ নেই| 11 সর্বোচচ পদস্থ যাজক অমরিয ধর্ম ও প্রভু সংএান্ত যাবতীয় মামলা নিষ্পত্তির সমযে তোমাদের সাহায্য করবেন| রাজার বিষযে মামলার কাজকর্মে তোমরা ইশ্ামাযেলের পুত্র, যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর অন্যতম নেতা, সবদিয়র কাছ থেকে সাহায্য পাবে| লেবীয়রা লেখকের কাজ করবে| সাহসে ভর করে, নিজেদের ওপর আস্থা রেখে তোমরা তোমাদের কাজ করো| প্রার্থনা করি, প্রভু যেন ন্যাযের পক্ষে থাকেন|”
1 কিছু কাল পরে, মোয়াবীয়, অম্মোনীয় ও মাযোনীয ব্যক্তিরা য়িহোশাফটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছিলেন| 2 কিছু লোক এলো এবং যিহোশাফটকে বলল, “মৃত সাগরের ওপারে, ইদোম থেকে একটা বড় সড় সৈন্যদল যাত্রা শুরু করেছে| দলটা কিন্তু ইতিমধ্যেই হত্সসোন তামর পর্য়ন্ত এসে গেছে|” (হত্সসোন তামরকে ঐন্-গদীও বলা হয়ে থাকে|) 3 যিহোশাফট ভীত হলেন এবং প্রভুর সাহায্য চাইবেন বলে ঠিক করলেন| তিনি যিহূদার সমস্ত লোককে উপবাস করতে আদেশ দিলেন| 4 যিহূদার প্রত্যেক শহর থেকে লোকরা প্রভুর কাছ থেকে সাহায্য চাইবার জন্য জড়ো হলো| 5 যিহোশাফট প্রভুর মন্দিরের নতুন উঠোনে যিহূদা ও জেরুশালেমের সমবেত লোকদের সামনে দাঁড়ালেন এবং 6 বললেন, “হে প্রভু! আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তুমিই স্বর্গের অধীশ্বর| বিশ্বের প্রত্যেক জাতি ও দেশের ভবিতব্য়ের তুমি নিযামক| তুমি সর্বশক্তিমান, কেউ তোমার বিরোধিতা করতে পারে না| 7 হে ঈশ্বর, এই দেশের লোকদের তুমি এই স্থান পরিত্যাগ করতে বাধ্য করেছিলে এবং তারা ইস্রায়েলের লোকদের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল| তুমি বয়ং এই ভূখণ্ড চিরকালের জন্য তোমার বন্ধু অব্রাহামের উত্তরপুরুষদের হাতে তুলে দিয়েছিলে| 8 তারা এই অঞ্চলে বাস করত এবং এখানে তোমার নামের জন্য একটি পবিত্র স্থান নির্মাণ করেছে| 9 তারা বলেছিল, ‘যদি কোনদিন কোনো বিপদ আমাদের কাছে আসে- তরবারি, শাস্তি, রোগসমূহ অথবা দুর্ভিক্ষ, আমরা এসে এই মন্দিরের সামনে, প্রভু তোমার সন্মুখে দাঁড়াব| যেহেতু তোমার নাম রযেছে এই মন্দিরে, বিপদের সমযে আমরা চিত্কার করে তোমাকেই ডাকবো আর তখন তুমি আমাদের ডাক শুনবে এবং আমাদের উদ্ধার করবে|’ 10 “কিন্তু এখন অম্মোন, মোযাব আর সেয়ীযের পার্বত্য অঞ্চলের সেইসব অধিবাসীরা এসে ইস্রায়েলের আক্রমণ করতে উদ্যত হয়েছেন যাদের রাজ্য তুমিই বয়ং একদিন ইস্রায়েলীয়দের আক্রমণ করতে দাওনি বলে তারা রক্ষা পেয়েছিল| মিশর থেকে আসার পথে তোমার নির্দেশ মেনে ইস্রায়েলীয়রা সেদিন এদের ধ্বংস করেনি| 11 অথচ দেখো আজ তারা তার কি প্রতিদান দিচ্ছে| তারা তোমার দেওয়া ভূখণ্ড থেকে আমাদের উত্খাত করতে আসছে| 12 হে আমাদের প্রভু ঈশ্বর, তুমি কি এদের শাস্তি দেবে না? এই যে বিপুল সৈন্যবাহিনী আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছে তার বিরুদ্ধে আমরা ক্ষমতাহীন| আমরা জানি না আমরা কি করব| তাই আমরা তোমার দিকে তাকিযে আছি|” 13 তাই যিহূদার সমস্ত লোকরা তাদের স্ত্রী এবং ছেলেমেয়ে নিয়ে প্রভুর সামনে দাঁড়িয়েছিল| 14 সেই সময়, প্রভুর আত্মা য়হসীযেলের ওপর ভর করল| য়হসীযেল ছিল সখরিয়র পুত্র; সখরিয় ছিল বনায়ের পুত্র| বনায ছিল য়িযেলের পুত্র এবং য়িযেল ছিল লেবীয় মত্তনিয়ের পুত্র| এরা সবাই ছিল আসফের উত্তরপুরুষ| সেই জমায়েতের মাঝখানে, 15 য়হসীযেল বলল, “যিহূদা ও জেরুশালেমবাসীরা এবং রাজা যিহোশাফট, তোমরা সকলে শোনো| প্রভু বলেন, ‘এই বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে চিন্তা করবার বা ভয় পাবার কোনো দরকার নেই কারণ এই যুদ্ধ তোমাদের নয়, ঈশ্বরের যুদ্ধ| 16 আগামীকাল তোমরা সকলে গিয়ে এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে| ওরা সীসের গিরিখাত দিয়ে আসবে এবং তোমরা তাদের য়রূযেল মরুভূমির পূর্বদিকে উপত্যকার প্রান্তে দেখতে পাবে| 17 এই সংঘর্ষে তোমাদের যুদ্ধ করবারও প্রযোজন নেই| তোমাদের শুধু যে যার জায়গায় দৃঢ় চিত্তে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আর দেখো আমি কিভাবে তোমাদের আর যিহূদা ও জেরুশালেমকে রক্ষা করি| চিন্তা করো না| আগামীকালের যুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে যাও এবং প্রভু তোমাদের সহায় হবেন|”‘ 18 যিহোশাফট তখন মুখ নীচের দিকে করে আভূমি আনত হলেন| যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত লোক প্রভুর সামনে আভূমি নত হল এবং প্রভুর উপাসনা করল| 19 কহাত্ ও কোরহ পরিবারগোষ্ঠীর লেবীয়রা উঠে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলো| 20 পরদিন ভোরবেলা য়িহোশাফটের সেনাবাহিনী তকোয মরুভূমি অভিমুখে যাত্রা করলো| তারা রওনা হবার ঠিক আগের মূহুর্তে যিহোশাফট উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমরা, যিহূদা আর জেরুশালেমের লোকরা, শোনো; প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখো তাহলে তোমাদের দেহে ও মনে শক্তি পাবে| তাঁর ভাব্বাণীর ওপর বিশ্বাস রেখো| জয় তোমাদের সুনিশ্চিত|” 21 যিহোশাফট তাঁর লোকদের অনুপ্রেরণা ও নির্দেশ দিতে লাগলেন| তারপর তিনি প্রভুর প্রশংসা ও সৌন্দর্য়্য় বর্ণনার জন্য এবং গাইবার জন্য কযেকজনকে মনোনীত করলেন| তারা সেনাবাহিনীর সামনে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে, প্রভুর প্রশংসা করে গান করল| “প্রভুকে ধন্যবাদ দাও কারণ তাঁর করুণা চিরস্থায়ী|” এই প্রশংসা গান গাইতে গাইতে যেতে লাগলো| 22 ইতিমধ্যে, এরা যখন ঈশ্বরের প্রশংসা সুচক গান করছিল, প্রভু তখন অম্মোনীয, মোয়াবীয় ও সেয়ীরের লোকদের অতর্কিত আক্রমণের জন্য সেনা সাজাচ্ছিলেন| যারা যিহূদা আক্রমণ করতে এসেছিল তারা পরাজিত হল| 23 অম্মোনীয় ও মোয়াবীয়রা সেয়ীরের পার্বত্য অঞ্চলের লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে শুরু করলো এবং তাদের হত্যা করলো| এরপর তারা একদল অপরদলকে হত্যা করলো! 24 যিহূদার লোকরা যুদ্ধের ওপর নজর রাখার জায়গায় এসে পৌঁছনোর পর শএুপক্ষের বিশাল সেনাবাহিনীর সন্ধান করতে গিয়ে চতুর্দিকে শুধুই স্তূপাকার মৃতদেহ দেখতে পেলো| কোন লোকই বেঁচে ছিল না| 25 যিহোশাফট আর তাঁর সেনাবাহিনী ঐসব মৃতদেহের স্তূপের কাছে এলো এবং মৃতদেহগুলোর থেকে বহু দুর্মূল্য জিনিসপত্র যেমন জন্তুজানোযার, অর্থ, পোশাক-পরিচ্ছদ উদ্ধার করে নিয়ে গেল| এতো বেশি জিনিসপত্র সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল যে তা বয়ে নিয়ে যেতে তিনদিন সময় লেগেছিল| 26 চতুর্থ দিনে যিহোশাফট আর তাঁর সেনাবাহিনী বরাখা উপত্যকায উপনীত হয়ে প্রভুকে ধন্যবাদ জানালো| সেই জন্যই এই উপত্যকাকে সেই সময় থেকে “বরাখা উপত্যকা” বলা হয়| 27 এরপর যিহোশাফট যিহূদা আর জেরুশালেমের সবাইকে নেতৃত্ব দিয়ে জেরুশালেমে ফিরিযে নিয়ে গেলেন| প্রভু তাদের শএুকে পরাজিত করেছেন বলে সকলেই খুব খুশি ছিল| 28 বীণা, বাঁশি, শিঙা, কর্তাল বাজিযে তারা জেরুশালেমে এলো এবং প্রভুর মন্দিরে গেল| 29 বয়ং প্রভু ইস্রায়েলের শএুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন, এখবর জানতে পেরে অন্যান্য রাজ্যগুলির প্রত্যেকে ভীত হল| 30 সে কারণে য়িহোশাফটের রাজত্বকালে ইস্রায়েলে শান্তি বিরাজ করেছিল| প্রভু সবদিক থেকে তাঁকে শান্তি দিয়েছিলেন| 31 পযত্রিশ বছর বয়সে যিহূদার রাজা হবার পর যিহোশাফট 25 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মাতা অসূবা ছিলেন শিল্হির কন্যা| 32 যিহোশাফট তাঁর পিতা আসার মতোই সত্পথে জীবনযাপন করেছিলেন| তিনি সর্বদাই প্রভুর প্রতি বাধ্য ছিলেন| 33 কিন্তু অন্য মূর্ত্তিদের পূজোর জন্য বানানো উঁচু জায়গাগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয় নি এবং লোকে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের কাছে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে সমর্পণ করেন নি| 34 তাঁর রাজত্বকালে প্রথম থেকে শেষাবধি যিহোশাফট যা কিছু করেছিলেন তা হনানির পুত্র যেহূর লেখা সরকারি নথিপত্রে লেখা আছে, যা পরবর্তীকালে ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত করা হয়| 35 যিহূদার রাজা যিহোশাফট তাঁর রাজত্বের শেষের দিকে ইস্রায়েলের রাজা অহসিয়র সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন| অহসিয় বহু পাপাচরণে লিপ্ত ছিলেন| 36 যিহোশাফট তাঁর সঙ্গে য়ৌথভাবে তর্শীশে যাবার জন্য জাহাজ বানানোর কাজ শুরু করেন| ইত্সিযোন- গেবর শহরে এইসব জাহাজ বানানো হতো| 37 তখন মারেশা থেকে দোদাবাহূর পুত্র ইলীযেষর যিহোশাফটকে বললেন, “তুমি অহসিয়র সঙ্গে হাত মিলিযেছো, তাই প্রভু তোমার জাহাজগুলি ধ্বংস করবেন|” বানানো জাহাজগুলো ভেঙ্গে যায় এবং শেষ পর্য়ন্ত যিহোশাফট বা অহসিয় কেউই আর তর্শীশে জাহাজ পাঠাতে পারেন নি|
1 রাজা য়িহোশাফটের মৃত্যুর পর তাকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর পুত্র যিহোরাম তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন| 2 যিহোরামের ভাইদের নাম হল অসরিয়, য়িহীযেল, সখরিয়, অসরিয়, মীখায়েল আর শফটিয| এঁরা সকলেই ছিলেন যিহূদার ভূতপূর্ব রাজা য়িহোশাফটের সন্তান| 3 যিহোশাফট তাঁর পুত্রদের সবার জন্যই বহু পরিমাণ সোনা, রূপো, দামী দামী জিনিসপত্র, যিহূদার সুরক্ষিত দুর্গসমূহ রেখে গেলেও তিনি তাঁর রাজত্বের ভার দিয়েছিলেন জ্যেষ্ঠ পুত্র যিহোরামের হাতে| 4 যিহোরাম তাঁর পিতৃদত্ত রাজত্বের শাসনভার গ্রহণ করলেন এবং নিজের ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করলেন| তারপর তরবারির সাহায্যে তাঁর অন্যান্য ভাইদের ও ইস্রায়েলের কিছু নেতাকে হত্যা করলেন| 5 বত্রিশ বছর বয়সে রাজা হয়ে তিনি মোট 8 বছর জেরুশালেমে শাসন করেন| 6 তিনি ইস্রায়েলের অপরাপর রাজাদের মতো এবং আহাবের কন্যাকে বিয়ে করার পর আহাবের বংশের ধারায জীবনযাপন করেছিলেন| প্রভুর চোখে যা মন্দ তিনি সেই সব কাজ করেছিলেন| 7 কিন্তু, যেহেতু তিনি দাযূদের সঙ্গে চুক্তি কর়েছিলেন, প্রভু দাযূদের বংশ নিঃশেষ করলেন না| প্রভু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, চির দীপ্য়মান প্রদীপের মতো, দাযূদের উত্তরপুরুষদের একজন সর্বদা যিহূদায় শাসন করবে| 8 যিহোরামের রাজত্বকালে ইদোম যিহূদার কর্তৃত্ব থেকে ভেঙ্গে বেরিয়ে নিজেরা নিজেদের রাজা নির্বাচন করেছিল| 9 যিহোরাম তাই তাঁর সমস্ত সেনাপতিসহ সেনা ও রথবাহিনী নিয়ে ইদোম আক্রমণ করতে গিয়েছিলেন| ইদোমীয় সেনাবাহিনী তাঁদের চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেললেও যিহোরাম রাতের অন্ধকারে সেই সৈন্যব্য়ূহ ভেদ করে বেরিয়ে এসেছিলেন এবং ইদোমীয়দের পরাজিত করেছিলেন| 10 সেই থেকে এখন পর্য়ন্ত ইদোম যিহূদার শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে চলেছে| লিব্নার স্থানীয বাসিন্দারা যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন কারণ যিহোরাম তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিলেন| 11 এছাড়াও তিনি যিহূদার পাহাড়গুলিতে উঁচু জায়গায় ভ্রান্ত মূর্ত্তিগুলির জন্য বেদীসমূহ বানিয়েছিলেন| তিনি জেরুশালেমের বাসিন্দাদের ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বস্ত করেছিলেন এবং যিহূদার বাসিন্দাদের বিপথে ঠেলে দিয়েছিলেন| 12 ইতিমধ্যে যিহোরাম ভাব্বাদী এলিযর কাছ থেকে একটি চিঠি পেলেন যাতে লেখা ছিল, “তোমার পূর্বপূরুষ দাযূদের ঈশ্বর বলেছেন: ‘যিহোরাম, তুমি তোমার পিতা য়িহোশাফটের বা যিহূদার রাজা আসার মতো জীবনযাপন করনি| 13 কিন্তু ইস্রায়েলের অপরাপর রাজাদের মতো, তুমি যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের আহাবের পরিবারের মত অবিশ্বস্ত করেছ| তুমি তোমার ভাইদের, যারা তোমার চেয়ে ভাল তাদেরও হত্যা করেছ| 14 এই কারণে বয়ং প্রভু তোমার পরিবারের সবাইকে ও তোমার লোকদের ওপর একটি রোগ পাঠিয়ে তোমাকে শাস্তি দেবেন| তিনি তোমার সমস্ত সম্পদ ধ্বংস করবেন| 15 তুমি ভয়ঙ্কর উদর পীড়ায আএান্ত হবে| দিনের পর দিন তোমার অবস্থা খারাপ হতে থাকবে এবং একটা সময় আসবে যখন তোমার অন্ত্রাদি বেরিয়ে আসবে|”‘ 16 প্রভু এরপর পলেষ্টীয় ও কূশ দেশের নিকটস্থ আরবীযদের মন রাজা যিহোরামের বিরুদ্ধে বিষিযে তোলেন| 17 তখন তারা সকলে একত্র হল এবং যিহূদা আক্রমণ করল| তারা যিহোরামের সমস্ত ধনসম্পদ, তার স্ত্রীদের এবং পুত্রদের নিয়ে গেল| যিহোরামের কনিষ্ঠ পুত্র য়িহোযাহস ছাড়া আর কেউই এই আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেলো না| 18 এসব ঘটনার পর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ীপ্রভু রাজা যিহোরামকে দুরারোগ্য উদরপীড়ায আএান্ত করলেন| 19 দুবছর পরে বহু যন্ত্রণাভোগের পর তাঁর নাড়িভুঁড়ি পেট থেকে বেরিয়ে এসে তিনি মারা যান| লোকেরা তাঁর পিতা য়িহোশাফটের মতো যিহোরামের মৃত্যুর পর তাঁর সম্মানার্থে কোনো য়জ্ঞের আযোজন করেন নি| 20 তাঁর মৃত্যুতে কোনো ব্যক্তিই দুঃখিত হন নি বা শোক প্রকাশ করেন নি| 32 বছর বয়সে রাজা হয়ে আট বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করার পর রাজা যিহোরামের মৃত্যু হল| লোকে তাকে দায়ূদ নগরীতেই কবরস্থ করলো, তবে রাজাদের বিশেষ সমাধি ক্ষেত্রে তারা যিহোরামকে সমাধিস্থ করেনি|
1 যিহোরামের পর, লোকরা তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র অহসিয়কে নতুন রাজা হিসাবে নির্বাচিত করলেন কারণ আরবদের সঙ্গে যারা প্রাসাদ আক্রমণ করেছিল তারা অহসিয় ছাড়া যিহোরামের আর সব পুত্রদের হত্যা করেছিল| কনিষ্ঠ পুত্র হয়েও তিনি রাজত্বের দায়িত্ব পেলেন| 2 অহসিয় 22 বছর বয়সে যিহূদায় রাজা হয়ে মাত্র 1 বছর জেরুশালেম শাসন করেছিলেন|অহসিয়র মাতা অথলিয়া ছিলেন অম্রির কন্যা| 3 অহসিয় আহাব পরিবারের মতোই প্রভুর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করেছিলেন,কারণ তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তাঁর মাতা তাঁকে পাপপূর্ণভাবে রাজ্য শাসন করতে উপদেশ দিয়েছিলেন| 4 এবং তিনি আহাবের পরিবারের মত প্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করেছিলেন, কারণ তার পিতার মৃত্যুর পর তারাই তার উপদেষ্টা হয়েছিল এবং তারা তাকে নষ্ট করেছিল| 5 তাই, অহসিয় আহাব পরিবারের লোকদের কুপরামর্শ অনুযায়ীজীবনযাপন করত| তাদের পরামর্শতেই অহসিয় রামোত্-গিলিয়দে আহাবের পুত্র য়োরামের সঙ্গে অরামীয় রাজা হসায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যান, যেখানে তিনি আহত হয়েছিলেন 6 এবং সুস্থ হতে য়িষ্রিযেলে গিয়েছিলেন|এরপর, যিহূদার প্রাক্তন শাসক যিহোরামের পুত্র অহসিয়, য়িষ্রিযেলে আহাবের পুত্র য়োরামের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন কারণ য়োরাম আহত হয়েছিলেন| 7 ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযাযী, য়োরামের সঙ্গে অহসিয়র সাক্ষাত্ তাঁর মৃত্যু ঘনিয়ে এনেছিল কারণ যখন তিনি এসেছিলেন, তিনি এবং য়োরাম নিম্শির পুত্র যেহূর সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন যাকে প্রভু আহাবদের শাস্তি দেবার জন্য আহাব বংশ ধ্বংস করতে বেছে নিয়েছিলেন| 8 আহাব বংশের সদস্যদের হত্যা করার পর তিনি যিহূদার নেতাদের এবং অহসিয়র আত্মীযদের যারা তাঁর সেবা করেছিল, তাদের খুঁজে বের করলেন| তাদের তিনি হত্যা করলেন| 9 তারপর যেহূ অহসিয়র সন্ধান শুরু করেছিলেন| তাঁর লোকরা শমরিয়ায় লুকিয়ে থাকা অহসিয়কে ধরে যেহূর কাছে নিয়ে এলো| তাকে হত্যা করে তারা তাকে সমাধিস্থ করলো| তারা বলল, “যিহোশাফট, যিনি সর্বান্তঃকরণে প্রভুকে মেনে চলতেন, ইনি তাঁর নাতি|” এরপর অহসিয়র পরিবার আর যিহূদার রাজ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন নি| 10 অহসিয়র মাতা, রাণী অথলিয়া যখন দেখলেন যে তাঁর নিজের পুত্র অহসিয় মারা গিয়েছে তিনি তখন আদেশ দিলেন যে যিহূদার রাজত্বের উত্তরাধিকারী প্রত্যেককে হত্যা করতে হবে| 11 যিহোরামের কন্যা য়িহোসেবা, যাজক যিহোয়াদার স্ত্রী, অহসিয়র অন্য পুত্ররা নিহত হবার আগে তাঁর পুত্র য়োযাশ আর তাঁর ধাইমাকে শোবার ঘরে লুকিয়ে রেখেছিলেন| তিনি এরকম করেছিলেন যাতে অথলিয়া য়োযাশকে হত্যা করতে না পারেন| 12 প্রভুর মন্দিরে যাজকদের সঙ্গে য়োযাশ যখন লুকিয়েছিলেন সে সমযে অথলিয়া রাণী হিসেবে ছয় বছর রাজ্যটি শাসন করেছিলেন|
1 ছয় বছর চুপচাপ থাকার পর যিহোয়াদার আত্মবিশ্বাস য়থেষ্ট বেড়ে উঠল এবং তিনি সেনাপতিদের সঙ্গে একটি চুক্তি করলেন| সেই সেনাপতিরা ছিলেন: যিহোরামের পুত্র অসরিয়, য়িহোহাননের পুত্র ইশ্ামাযেল, ওবেদের পুত্র অসরিয়, অদাযার পুত্র মাসেয আর সিখ্রির পুত্র ইলীশাফট| 2 চুক্তি অনুযায়ীএরা যিহূদা ও যিহূদার পার্শ্ববর্তী থেকে সমস্ত লেবীয়দের ও ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারের নেতাদের একত্রিত করে তারপর জেরুশালেমে গেলেন| 3 এঁরা সবাই একসঙ্গে ঈশ্বরের মন্দিরে রাজার সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন| যিহোয়াদা এঁদের সবাইকে বলেছিলেন, “আমাদের অবশ্যই রাজার ছেলেকে শাসন করতে দেওয়া উচিত্, কারণ প্রভু দাযূদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে শুধু তাঁর উত্তরপুরুষরাই যিহূদা শাসন করবে| 4 এখন তোমাদের সবাইকে কযেকটা কর্তব্য পালন করতে হবে| যাজক ও লেবীয়দের মধ্যে যারা বিশ্রামের দিন মন্দিরের নিত্যকর্ম সম্পাদন করতে যান তাঁদের এক তৃতীয়াংশ মন্দিরের দরজার ওপর নজর রাখবেন| 5 আর এক তৃতীয়াংশ যাবেন রাজপ্রাসাদে| আরেক এক তৃতীয়াংশ থাকবেন ভিত্তিমূলের দরজায আর বাদবাকী সকলেই প্রভুর মন্দিরের আঙিনায থাকবেন| 6 কাউকে যেন প্রভুর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া না হয়| শুধুমাত্র যেসব যাজকগণ ও লেবীয়রা মন্দিরের সেবা করেন, তাঁদেরই প্রভুর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে কারণ তাঁরা পবিত্র| অন্যান্যরা প্রভু তাদের যে যে কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন তাই করবে| 7 লেবীয়দের তরবারি ধারণ করতে হবে এবং সব সময় রাজার কাছাকাছি থাকতেই হবে| কেউ যদি মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করে তাকে যেন হত্যা করা হয়|” 8 লেবীয় ও যিহূদার সমস্ত ব্যক্তি অক্ষরে অক্ষরে যাজক যিহোয়াদার সমস্ত নির্দেশ পালন করেছিলেন| যাজক যিহোয়াদা যাজকবর্গের সবাইকেই কোনো না কোনো কাজে নিযুক্ত করেছিলেন| যে কারণে ছুটির দিন সমস্ত সেনাপতি তাঁদের অধীনস্থ সবাইকে নিয়ে সেদিন যারা মন্দিরে এসেছিল তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন| 9 যাজক যিহোয়াদা সমস্ত সেনানাযকদের রাজা দাযূদের আমলের বল্লম ও ছোট বড় ঢালগুলো বের করে দিয়েছিলেন| রাজা দাযূদের এই সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র প্রভুর মন্দিরেই রাখা হতো| 10 এরপর যিহোয়াদা কাকে কোথায দাঁড়াতে হবে বুঝিযে দিয়েছিলেন| সশস্ত্র প্রহরীরা মন্দিরের দক্ষিণদিক থেকে শুরু করে উত্তরদিক পর্য়ন্ত মন্দিরের কাছে, বেদীর পাশে আর রাজার চারপাশে দাঁড়িয়েছিল| 11 এরপর, সকলে মিলে বালক রাজপুত্রকে নিয়ে এলেন এবং তার মাথায় রাজমুকুট পরিযে তার হাতে চুক্তিটির একটি প্রতিলিপি দিলেন| যাজক যিহোয়াদা আর তাঁর পুত্ররা সবাই পবিত্র তেল ছিটোলেন, বালক য়োযাশকে রাজা বলে ঘোষণা করে জয়ধ্বনি দিয়ে উঠলেন, “মহারাজ দীর্ঘজীবী হোন!” 12 এদিকে রাণী অথলিয়া মন্দিরে অনেক লোকের পদ শব্দ ও জয়ধ্বনি শুনে কি হয়েছে দেখতে প্রভুর মন্দিরে এলেন| 13 সেখানে তিনি নতুন রাজাকে দেখতে পেলেন| সেই সময় য়োযাশ প্রধান ফটকে, রাজার স্তম্ভের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন এবং সমস্ত সেনাপতি ও লোকরা তাঁকে ঘিরে আনন্দ সহকারে বাদ্যযন্ত্রসমূহ এবং শিঙা ও ভেরী বাজাচ্ছিল| গায়করা তাদের বাদ্যযন্ত্র বাজিযে উত্সবে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন| এই দেখে পরণের পোশাক ছিঁড়তে ছিঁড়তে রাণী অথলিয়া বলে উঠলেন, “বিদ্রোহ, বিদ্রোহ করেছে সবাই!” 14 যাজক যিহোয়াদা তখন উপস্থিত সেনানাযকদের নিয়ে এসে নির্দেশ দিলেন, “তোমরা সৈনিকরা অথলিয়াকে মন্দিরের বাইরে নিয়ে যাও| কেউ যদি ওর পিছু নেবার চেষ্টা করে সঙ্গে সঙ্গে তরবারি দিয়ে তাকে হত্যা করবে|” কিন্তু দেখো, অথলিয়াকে যেন প্রভুর মন্দিরের চত্বরে না মারা হয়| 15 রাজপ্রাসাদের অশ্বদ্বার পার হওয়া মাত্রই, সেনাবাহিনীর লোকরা অথলিয়াকে ধরে ফেললো এবং তাকে সেখানে হত্যা করলো| 16 এরপর, যিহোয়াদা সমস্ত প্রজা ও রাজার সঙ্গে চুক্তি করলো| প্রত্যেকে প্রভুর বিশ্বস্ত সেবক হতে সম্মতি জানালো| 17 সবাই মিলে বালদেবতার মূর্ত্তি বসানো মন্দিরে গিয়ে, মন্দির ও সেখানকার বেদী ও মূর্ত্তি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করলো| বালদেবের বেদীর সামনে তারা বালদেবের পূজারী মত্তনকে হত্যা করলো| 18 তখন যিহোয়াদা লেবীয় গোষ্ঠীর যাজকদের আদেশ দিলেন আনন্দের সঙ্গে এবং গান গেয়ে সেবা কাজগুলি করতে যেগুলি দায়ূদ মন্দিরের জন্য নির্দিষ্ট করেছিলেন এবং মোশির বইতে যেমন লেখা আছে সেইমত প্রভুকে বলি উত্সর্গ করতে যেমন দায়ূদ করতেন| 19 অধিকন্তু যিহোয়াদা মন্দিরের দরজায প্রহরীদের নিয়োগ করেছিলেন যাতে কোন ব্যক্তি যে অশুচি, সে মন্দিরে ঢুকতে না পারে| 20 যিহোয়াদা, সেনাপতিবর্গ, নেতৃবর্গ, শাসকবর্গ ও দেশের লোকেরা রাজাকে যথায়থ সম্মানে বের করে আনলেন এবং উত্তর দ্বারের পথ দিয়ে রাজপ্রাসাদে গেলেন এবং সেখানে তারা তাঁকে সিংহাসনে বসালেন| 21 যিহূদার সকলেই সেদিন খুব খুশি ছিল| অনেকদিন পর অত্যাচারী রাণী অথলিয়ার মৃত্যুতে জেরুশালেম শহরে আবার শান্তি নেমে এলো|
1 য়োযাশ মাত্র 7 বছর বয়সে রাজা হয়ে 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা সিবিযা ছিলেন বের্-শেবা শহরের বাসিন্দা| 2 যতদিন পর্য়ন্ত যাজক যিহোয়াদা জীবিত ছিলেন ততদিন পর্য়ন্ত য়োযাশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেছিলেন| 3 যিহোয়াদা যোয়াশের দুটো বিয়ে দিয়েছিলেন| বিয়ের পর, রাজা যোয়াশের অনেকগুলি সন্তান হয়েছিল| 4 পরবর্তীকালে, রাজা য়োযাশ প্রভুর মন্দিরকে নবরূপ দেবার পরিকল্পনা করেছিলেন| 5 তিনি সমস্ত লেবীয় ও যাজকদের একসঙ্গে ডেকে বললেন, “যাও, ইস্রায়েলের প্রত্যেকে প্রতি বছর যে কর দেয তা সংগ্রহ কর এবং তোমাদের প্রভুর মন্দিরকে নতুন রূপ দাও| যাও, আর দেরী করো না|” কিন্তু লেবীয়রা এতে বিশেষ উত্সাহ দেখালেন না| 6 তখন রাজা য়োযাশ প্রধান যাজক যিহোয়াদাকে ডেকে বললেন, “আপনি কেন লেবীয়দের যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করতে আদেশ দেন নি যা প্রভুর দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকরা পবিত্র তাঁবুর জন্যই ব্যবহার করতেন|” 7 অতীতে, দুষ্ট রাণী অথলিয়ার পুত্ররা প্রভুর মন্দির থেকে পবিত্র জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেগুলো বালদেবতার আরাধনার জন্য ব্যবহার করেছিলেন| 8 রাজা য়োযাশ প্রভুর মন্দিরের দরজার বাইরে একটা প্রণামীর সিন্দুক বানিয়ে বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন| 9 এরপর লেবীয়রা যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের প্রভুর জন্য কর দেবার কথা ঘোষণা করেন| ঈশ্বরের জন্য ইস্রায়েলীয়রা যখন মরুভূমিতে দিন কাটাচ্ছিল তখন এইভাবে মোশি এই কর সংগ্রহ করেছিলেন| 10 সমস্ত নেতা ও লোকরা খুশি মনে করে নিয়ে এসে প্রণামীর সিন্দুকে জমা দিল| সিন্দুকটা যতক্ষণ পর্য়ন্ত না ভরে গেল ততক্ষণ পর্য়ন্ত সবাই সিন্দুকে অর্থ জমা করতে লাগলো| 11 সিন্দুকটা ভরে গেলে লেবীয়রা সেটা রাজকর্মচারীদের কাছে নিয়ে গেল| যখন রাজার সচিব ও প্রধান যাজকের সহকারী সিন্দুক খালি করে তার থেকে যাবতীয় অর্থ বের করে নিলেন, ওটা আবার ভরে যাওয়া পর্য়ন্ত একই জায়গায় ফেরত্ দেওয়া হয়েছিল| এইভাবে বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল| 12 রাজা য়োযাশ ও যিহোয়াদা দুজনে এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের তদারকির কাজ য়াঁরা করতেন তাদের দিলেন| তারা প্রভুর মন্দির সারানোর জন্য সুদক্ষ পাথরকাটিযে ও ছুতোর মিস্ত্রি ভাড়া করলেন| এছাড়াও লোহা ও পিতলের কাজ জানা কারিগরদেরও ভাড়া করা হয়েছিল| 13 যারা প্রভুর মন্দির তদারকির কাজ করতো তারা সকলেই নিষ্ঠাবান ও সত্ হওয়ায ঈশ্বরের মন্দির পুননির্মাণের কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল এবং প্রভুর মন্দিরকে ঠিক আগের মতো ও আরো দৃঢ় করে বানানো হয়| 14 কাজটি শেষ হলে কর্মচারীরা অবশিষ্ট অর্থ রাজা য়োযাশ ও যাজক যিহোয়াদার কাছে ফিরিযে আনলো| এই অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র বানানো ছাড়াও, এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের নিত্যসেবা ও হোমবলি নিবেদনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল| এছাড়াও এই অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে সোনা ও রূপোর পাত্র ও টুকিটাকি জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল| যিহোয়াদার জীবদ্দশায় যাজকরা নিয়মিত প্রভুর মন্দিরে হোমবলি উত্সর্গ করতেন| 15 অবশেষে, যিহোয়াদা বৃদ্ধ হলেন এবং 130 বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হল| 16 লোকরা দায়ূদ নগরীতে রাজাদের সমাধি ক্ষেত্রে যিহোয়াদাকে সমাধিস্থ করেছিলেন কারণ তিনি ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও তাঁর মন্দিরের জন্য বহু ভাল ভাল কাজ করেছিলেন| 17 যিহোয়াদার মৃত্যুর পর, ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ রাজা য়োযাশকে অভ্য়র্থনা করলেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর স্তুতি করতে শুরু করলেন| য়োযাশ তাদের পরামর্শগুলি গ্রহণ করেছিলেন| 18 রাজা ও নেতারা, প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের মন্দিরের দিক থেকে মুখ ফিরিযে নিলেন| পরিবর্তে, তারা আশেরার খুঁটি ও অন্যান্য ভ্রান্ত মূর্ত্তি পূজো শুরু করলেন| রাজা ও নেতাদের অপরাধের জন্য ঈশ্বর যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর রুদ্ধ হলেন| 19 ঈশ্বর লোকদের মন তাঁর প্রতি ফিরিযে আনার জন্য ভাব্বাদীদের পাঠালেন| কিন্তু লোকরা সদুপদেশে কর্ণপাত পর্য়ন্ত করলো না| 20 তারপর ঈশ্বরের আত্মা যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়র ওপর ভর করলো| তিনি লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “ঈশ্বর এই কথা বলেছেন: ‘তোমরা কেন প্রভুর বিধিসমূহ ও আজ্ঞা অমান্য করছো? এভাবে তোমরা কখনোই কোনো কাজে কৃতকার্য় হতে পারবে না| তোমরা প্রভুকে ত্যাগ করেছো, তাই তিনিও তোমাদের ত্যাগ করেছেন|” 21 কিন্তু বিচারবুদ্ধিহীন লোকরা তখন একসঙ্গে চএান্ত করলো এবং রাজা যখন তাদের সখরিয়কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন, তারা পাথর ছুঁড়ে মন্দির চত্বরেই তাঁকে হত্যা করলো| 22 একবারও রাজা য়োযাশ তাঁর প্রতি সখরিয়র পিতা যাজক যিহোয়াদার করুণার কথা মনে করলেন না| মারা যাবার আগের মূহুর্তে সখরিয় বললেন, “প্রভু যেন তোমার এই অপরাধ দেখতে পান এবং তোমাকে এর য়োগ্য শাস্তি দেন|” 23 এক বছরের মধ্যে অরামীয় সেনাবাহিনী এসে রাজা যোয়াশের রাজ্য আক্রমণ করলো| তারা যিহূদা ও জেরুশালেম আক্রমণ করল এবং সমস্ত নেতাদের হত্যা করবার পর সেনাবাহিনী যাবতীয় দুর্মূল্য জিনিসপত্র লুঠ করে দম্মেশকে রাজার কাছে সেগুলি পাঠিয়ে দিল| 24 অরামীয়রা ছোট সেনাবাহিনী নিয়ে এলেও প্রভু তাদের যিহূদার সেনাবাহিনী, যেটা তাদের সেনাবাহিনীর চেয়ে বড় ছিল, তাকে পরাজিত করতে দিলেন| কারণ যিহূদার লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিল| এইভাবে রাজা যোয়াশের শাস্তি বিধান হল| 25 অরামীয়রা যখন চলে গেল তখন তিনি ভীষণভাবে আহত| তাঁর নিজের ভৃত্যরাই তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে তাঁর বিছানায হত্যা করলো| এরপর লোকরা তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করলো, তবে তা রাজাদের জন্য নির্দিষ্ট সমাধি ক্ষেত্রে নয়| যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়কে হত্যা করার জন্যই যোয়াশের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করেছিল| 26 যোয়াশের বিরুদ্ধে যারা চএান্ত করেছিল তাঁরা হল অম্মোনের শিমিযতের পুত্র সাবদ ও মোয়াবের শিম্রীতের পুত্র য়িহোষাবদ| 27 যোয়াশের পুত্রদের গল্প, তাঁর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী ও তিনি কিভাবে আবার প্রভুর মন্দির নবরূপে নির্মাণ করেছিলেন সেসব কথা ‘রাজাদের সম্বন্ধে ব্বিরণী গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ আছে| যোয়াশের পর তাঁর পুত্র অমত্সিয নতুন রাজা হলেন|
1 পঁচিশ বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে অমত্সিয মোট 29 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মাতা য়িহোযদ্দনও ছিলেন জেরুশালেম থেকেই| 2 অমত্সিয প্রভুর অভিপ্রায় অনুযায়ীসমস্ত কাজ করলেও তিনি সর্বান্তঃকরণে এইসব কাজ করেন নি| 3 অবশেষে তিনি রাজা হিসেবে নিজের শাসন প্রতিষ্ঠিত করলেন এবং যে সমস্ত রাজকর্মচারীরা তাঁর পিতাকে খুন করেছিল তাদের হত্যা করলেন| 4 কিন্তু অমত্সিয এইসব ব্যক্তিদের সন্তানদের হত্যা করেন নি| কারণ তিনি মোশির পুস্তকে লেখা বিধি অনুযায়ীকাজ কর়েছিলেন| প্রভু আদেশ দিয়েছিলেন, “সন্তানদের অপরাধের জন্য যেমন অভিভাবকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না, ঠিক একই রকমভাবে পিতামাতার কোনো অপরাধের জন্য কোন সন্তানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ঠিক হবে না| কোন ব্যক্তিকে কেবলমাত্র তার কৃত কোন কুকর্মের জন্যই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে|” 5 অমত্সিয যিহূদা এবং বিন্যামীনের সমস্ত ব্যক্তিদের একত্রিত করলেন এবং তাদের পরিবার অনুযায়ীপৃথক করেছিলেন| তিনি তাদের সৈন্যাধ্যক্ষ ও অধিনাযকদের কর্ত্তৃত্বের অধীনে রেখেছিলেন| 20 বছর বা তার বেশী বয়স্ক লোকদের সৈনিক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল| এভাবে সব মিলিযে ঢাল ও বল্লমধারী মোট 3,00,000 য়োদ্ধা ছিল| 6 এছাড়াও অমত্সিয ইস্রায়েলের থেকে 3 3,4 টন রূপোর বিনিময়ে 1,00,000 সৈন্য ধার করেছিলেন| 7 কিন্তু এসমযে একজন ভাব্বাদী এসে অমত্সিযকে বললেন, “মহারাজ, ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীকে আপনার সঙ্গে যেতে দেবেন না| কারণ বর্তমানে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে নেই, ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর সঙ্গেও নেই| 8 যদি তোমরা যুদ্ধে যাও তোমরা অবশ্যই একটি কঠিন যুদ্ধের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রেখো| ঈশ্বর হয়তো তোমাদের বাধা দেবেন কারণ ঈশ্বরের ক্ষমতা আছে তোমাকে সাহায্য করতে অথবা তোমাকে বাধা দিতে|” 9 তখন অমত্সিয তাকে বললেন, “কিন্তু আমি এর মধ্যে ইস্রায়েলীয়দের যে অর্থ দিয়েছি তার কি হবে?” ঈশ্বরের লোক উত্তর দিলেন, “প্রভুর ভাণ্ডার অফুরন্ত| তিনি চাইলে আপনাকে এর থেকেও বেশি দিতে পারেন!” 10 অমত্সিয তখন ইস্রায়েলীয় সেনাদের ইফ্রয়িমে তাদের বাসভূমিতে পাঠিয়ে দিলেন| এর ফলে এরা সকলেই যিহূদার রাজা ও অধিবাসীদের ওপর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে গেল| 11 এরপর অমত্সিয বীর বিক্রিমে তাঁর সেনাদের ইদোমের লবণ উপত্যকায় যুদ্ধে নেতৃত্ব দিলেন| সেখানে তাঁর সেনাবাহিনী 10,000 সেয়ীর় সৈন্যকে হত্যা করলো, 12 এবং আরও 10,000 সৈন্যকে পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে গিয়ে ধাক্কা মেরে তাদের নীচে ফেলে দিল| নীচে কঠিন পাথরের ওপর পড়বার জন্য এইসব সৈনিকদের মৃত্যু হল| 13 কিন্তু এসমযে যে সমস্ত ইস্রায়েলীয় সেনাদের অমত্সিয ফেরত্ পাঠিয়েছিলেন তারা যিহূদার বৈত্-হোরোণ থেকে শমরিয়া পর্য়ন্ত অঞ্চলের শহরগুলো আক্রমণ করতে শুরু করেছিল| এরা 3,000 ব্যক্তিকে হত্যা করে বহু দামী দামী জিনিস লুঠ করেছিল| 14 ইদোমীয়দের যুদ্ধে পরাজিত করার পর অমত্সিয স্বদেশে ফিরে এলেন| ফিরে আসার সমযে অমত্সিয সেয়ীরের লোকেদের সেই মূর্ত্তিগুলো এনেছিলেন| এরপর অমত্সিয নিজে সেইসব মূর্ত্তি পূজো করতে শুরু করলেন| এদের সামনে তিনি নত হয়েছিলেন এবং তাদের কাছে ধুপধূনো জ্বালাতেন| 15 এতে প্রভু যারপরনাই রুদ্ধ হলেন এবং অমত্সিযের কাছে এক ভাব্বাদীকে পাঠালেন| তিনি এসে অমত্িসযকে বললেন, “তুমি কেন হঠাত্ ভিনদেশীয মূর্ত্তির পূজো শুরু করলে? এইসব মূর্ত্তিগুলো তো এদের উপাসকদেরও তোমার বিরুদ্ধে রক্ষা করতে পারেনি|” 16 এর উত্তরে অমত্সিয উদ্ধতভাবে সেই ভাব্বাদীকে বললেন, “চুপ কর নয়তো মারা পড়বে| আমরা কি তোমাকে রাজার পরামর্শদাতা নিয়োগ করেছি?” সেই ভাব্বাদী তখন বললেন, “প্রভু তাহলে সত্যি সত্যিই তোমার পাপাচরণের জন্য তোমাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন যেহেতু তুমি আমার উপদেশ নিলে না|” 17 অমত্সিয তাঁর মন্ত্রণাদাতাদের সঙ্গে পরামর্শ করার পর ইস্রায়েলের রাজা য়িহোযাহসের পুত্র যেহূর পৌত্র য়িহোযামকে খবর পাঠালেন, “চলো আমরা সম্মুখ যুদ্ধ করি|” 18 ইস্রায়েলের রাজা য়োযাশ এর প্রত্যুত্তরে যিহূদার রাজা অমত্সিযকে খবর পাঠালেন, ‘লিবানোনের এক কাঁটাঝাড়, এক মহীরূহকে বলেছিলেন, ‘তোমার কন্যার সঙ্গে আমার পুত্রের বিয়ে দাও|’ আর এদিকে এক বুনো জন্তু এসে কাঁটাঝাড় মাড়িয়ে দিয়ে চলে গেলো| 19 শোনো, তোমরা ইদোমকে হারিযে দিয়েছ তাই তোমরা গর্বিত ও অহঙ্কারী হয়েছ| বাড়ীতে বসে থাক, আমাদের প্ররোচিত করো না| যদি তোমরা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাও তোমরা তো বটেই, এমনকি যিহূদাও পরাজিত হবে|” 20 কিন্তু অমত্সিয একথায় কান দিতে চাইলেন না| আসলে এ ঘটনা প্রভুর অভিপ্রায় অনুসারেই ঘটেছিল| ইস্রায়েলীয়দের হাতে যিহূদাকে পরাজিত করার পরিকল্পনা বয়ং প্রভুই করেছিলেন কারণ তারা ইদোমীযদের মূর্ত্তি পূজো করবার অপরাধ করেছিল| 21 ইস্রায়েলের রাজা য়িহোযাস যিহূদায় বৈত্-শেমশেতে রাজা অমত্সিযর মুখোমুখি হলেন| 22 যুদ্ধে ইস্রাযেল যিহূদাকে পরাজিত করল| যিহূদার প্রত্যেকে রণে ভঙ্গ দিয়ে বাড়ি পালালো| 23 রাজা য়িহোযাস বৈত্-শেমশেতে যিহূদার রাজা অমত্সিযকে বন্দী করে তাঁকে জেরুশালেমে নিয়ে গেলেন| অমত্সিয ছিলেন যোয়াশের পুত্র এবং য়িহোযাহসের পৌত্র| য়িহোযাস ইফ্রয়িমের ফটক থেকে কোণের ফটক পর্য়ন্ত জেরুশালেমের প্রাচীরের 600 ফুট ভেঙ্গে ফেললেন| 24 তিনি সমস্ত সোনা ও রূপো এবং ওবেদ ইদোম যা কিছু জিনিষপত্র মন্দিরে পাহারা দিত, প্রাসাদের সমস্ত কিছু সম্পদ এবং বন্দীদের নিয়েছিলেন| তিনি এই সব কিছু শমরিয়াতে ফিরিযে নিয়ে গেলেন| 25 য়িহোযাসের মৃত্যুর পর অমত্সিয আরো 15 বছর বেঁচ্ছেিলেন| 26 অমত্সিয তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি আর যা কিছু করেছিলেন সেসবই ‘যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 27 অমত্সিয যখন প্রভুকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দিলেন তখন জেরুশালেমের লোকেরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করলো| অমত্সিয কোনোমতে লাখীশে পালিয়ে গেলেও লোকেরা সেখানে লোক পাঠিয়ে অমত্সিযকে হত্যা করল| 28 তারপর তারা ঘোড়ার পিঠে করে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে এলো এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করলো|
1 এরপর যিহূদার লোকরা অমত্সিযর জায়গায় কিশোর উষিযকে নতুন রাজা হিসেবে নিযুক্ত করলো| উষিয মাত্র 16 বছর বয়সে রাজা হয়ে 52 বছর জেরুশালেমে শাসন করেছিলেন| তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তিনি ‘এলত্’ শহরটি নতুন করে বানিয়ে যিহূদাকে ফেরত্ দিয়েছিলেন|উষিযর মা য়িখলিযা ছিলেন জেরুশালেমের বাসিন্দা| 2 3 4 উষিয প্রভুর বাধ্য ছিলেন এবং তাঁর পিতা অমত্সিযর মত জীবনযাপন করেছিলেন| 5 সখরিয়র জীবদ্দশায় তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করে ও অনুপ্রেরণা পেয়ে উষিয ঈশ্বরকে অনুসরণ করেছিলেন| আর ঈশ্বরের প্রতি যতদিন তাঁর অবিচল ভক্তি ছিল প্রভু ঈশ্বরও তাঁকে সাফল্য দিয়েছিলেন| 6 উষিয পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, গাত, য়ব্নি ও অস্দোদ শহরগুলোর চারপাশের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছিলেন এবং অস্দোদ ও পলেষ্টীয় অধ্য়ুষিত অন্যান্য অঞ্চলগুলিতে নতুন শহরসমূহ তৈরী করেছিলেন| 7 পলেষ্টীয় ও গূরবালে বসবাসকারী আরবীয ও মিযূনীযদের বিরুদ্ধে যখন উষিয যুদ্ধ করেছিলেন, প্রভু উষিযর সহায়তা করেছিলেন| 8 অম্মোনীয়রা উষিযর বশ্যতা স্বীকার করে তাঁকে উপঢৌকন পাঠায| তাঁর অসীম সাহসের খ্যাতি মিশরের সীমান্ত পর্য়ন্ত ছড়িয়ে পড়ে কারণ তিনি খুব ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিলেন| 9 জেরুশালেমের কোণার ফটকে, উপত্যকার ফটকে এবং প্রাচীরের বাঁকের মুখে উষিয সুদৃঢ় নজরদারি স্তম্ভসমূহ তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলোর সবগুলোকে দূর্গ দিয়ে বেষ্টিত করেছিলেন| 10 উষিয জনহীন স্থানে কযেকটি গম্বুজ বানিয়েছিলেন, কারণ পার্বত্য অঞ্চলে ও সমভূমিতে তাঁর বিস্তর গবাদি পশু ছিল| তিনি পাহাড়তলী এবং উপত্যকাবর্তী সমভূমিতে কৃষকও রেখেছিলেন ও কারমেলে দ্রাক্ষাক্ষেত দেখাশোনার লোক রেখেছিলেন যেহেতু তিনি কৃষিকাজ ভালবাসতেন| 11 উষিযর একটি সুদক্ষ সেনাবাহিনীও ছিল| য়িযূযেল নামে এক সচিব ও মাসেয নামে জনৈক অধ্যক্ষ মিলে গুণে গেঁথে সেনাবাহিনীটিকে কযেকটি দলে বিভক্ত করে হনানিযকে প্রধান সেনাপতি পদে নিয়োগ করেছিলেন| হনানিয ছিলেন রাজার অধীনস্থ পদস্থ চাকুরেদের অন্যতম| 12 সেনাবাহিনীকে যারা নির্দেশ দিতেন তাদের মধ্যে মোট 2,600 জন পরিবারের নেতা ছিলেন| 13 এই লোকরা 3,07,500 য়োদ্ধার এই সৈন্যদলকে পরিচালনা করতেন, যারা যে কোন শএুর বিরুদ্ধে অত্যন্ত পারদর্শীতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারত| 14 উষিয তাঁর সেনাবাহিনীর জন্য বল্লম, ঢাল, শিরস্ত্রাণ, তীর, ধনুক ও গুলতির জন্য পাথর তৈরি করিযেছিলেন| 15 জেরুশালেমে প্রাচীরের ওপরে এবং নজরদারির স্তম্ভগুলোর ওপরে পারদর্শীদের দ্বারা আবিস্কৃত বিশেষ ধরণের গুলতিসমূহ বসানো হয়েছিল যেগুলো পাথর ও তীর ছুঁড়তে পারত| দূরদূরান্তে উষিযর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি এমে বিখ্যাত ও শক্তিশালী এক রাজায পরিণত হন| 16 কিন্তু শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষিযর দম্ভ তাঁকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয, কারণ তিনি প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করতে শুরু করেন| এমনকি উষিয একবার প্রভুর মন্দিরের বেদীতে ধুপধূনো জ্বালাতেও গিয়েছিলেন| 17 যাজক অসরিয় ও প্রভুর সেবায নিযুক্ত আরো 80 জন সাহসী যাজক ও উষিযকে অনুসরণ করেন| 18 তাঁরা উষিযকে থামিয়ে দেন ও সতর্ক করে বলেন, “ধুপধূনো জ্বালাবার অধিকার আপনার নেই, এ কাজ একমাত্র হারোণের এবং যাজক উত্তরপুরুষরা করতে পারেন কারণ এ কাজের জন্য তাঁদের নির্দিষ্ট করা হয়েছে| আপনি অনুগ্রহ করে পবিত্রতমস্থান থেকে চলে যান| আপনি অনধিকার প্রবেশ করেছেন এবং এটা প্রভুর কাছ থেকে আপনাকে সম্মান এনে দেবে না|” 19 কিন্তু একথা শুনে, উষিয যাজকদের প্রতি অত্যন্ত রুদ্ধ হলেন| তাঁর হাতে ছিল একটি ধুনুচি এবং সেসমযে যাজকদের চোখের সামনে বেদীর পাশে দাঁড়ানো অবস্থাতেই উষিযর কপালে কুষ্ঠরোগের লক্ষণ ফুটে উঠলো| 20 অসরিয় ও অন্যান্য যাজকরা উষিযর কপালে কুষ্ঠর চিহ্ন ফুটে উঠতে দেখে জোর করে তাঁকে মন্দির থেকে বের করে দিলেন| উষিয দ্রুত মন্দির ছেড়ে চলে গেলেন কারণ শাস্তিস্বরূপ প্রভু তাঁকে চর্মরোগ দিয়েছিলেন| 21 এইভাবে মৃত্যুর দিন অবধি রাজা উষিযর চর্মরোগ ছিল এবং তিনি প্রভুর মন্দিরে প্রবেশের অধিকার হারালেন| তাঁর পুত্র য়োথম তাঁর রাজত্বের শেষদিকে শাসক হিসেবে রাজপ্রাসাদ ও লোকদের ওপর কর্তৃত্ব করতেন| 22 প্রথম থেকে শেষাবধি উষিয আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই আমোসের পুত্র ভাব্বাদী য়িশাইয লিখে গিয়েছিলেন| 23 উষিযর মৃত্যুর পর তাকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর না দিয়ে তাঁদের সমাধিক্ষেত্রের নিকটস্থ এক মাঠে সমাধিস্থ করা হয়| তিনি কুষ্ঠরোগী হওয়ায লোকরা তাঁকে রাজাদের সমাধিক্ষেত্রে সমাধিস্থ করেনি| তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র য়োথম তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন|
1 পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হয়ে য়োথম মোট 16 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মাতা য়িরূশা ছিলেন সাদোকের কন্যা| 2 য়োথম প্রভুর অভিপ্রায় অনুসারে তাঁর পিতা উষিযর মতোই ঈশ্বরকে অনুসরণ করতেন| কিন্তু তিনি কখনও তাঁর পিতা উষিযর মতো প্রভুর মন্দিরে ঢুকে ধুপধূনো দেবার দুঃসাহস প্রকাশ করেন নি| কিন্তু তা সত্ত্বেও লোকেরা পাপাচরণ করে যেতে লাগলো| 3 য়োথম প্রভুর মন্দিরের উত্তর দরজাটি পুনর্নিমাণ করা ছাড়াও ওফলের প্রাচীরের ওপর অনেক কিছু স্থাপন করেন এবং 4 যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলে বেশ কিছু শহর স্থাপন করেছিলেন| এছাড়াও তিনি জঙ্গলে দুর্গ ও নজরদারির জন্য স্তম্ভ বানান| 5 অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি যুদ্ধে অম্মোন-রাজকে পরাজিত করেন যার ফলস্বরূপ তিন বছর ধরে একটানা প্রত্যেক বছর অম্মোনীয়রা তাঁকে 3 3,4 টন রূপো, প্রায 62,000 বুশেল গম ও যব নজরানা দিত| 6 প্রভু তাঁর ঈশ্বরকে অনুসরণ করে য়োথম শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন| 7 তিনি আর যা কিছু করেছিলেন সেসব ও তাঁর যুদ্ধের ব্বিরণী ‘ইস্রাযেল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 8 পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হয়ে 16 বছর জেরুশালেম শাসন করার পর তাঁর মৃত্যু হলে 9 তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করা হল| এরপর য়োথমের জায়গায় রাজা হলেন তাঁরই পুত্র আহস|
1 আহস 20 বছর বয়সে রাজা হয়ে মোট 16 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তিনি তাঁর ধর্মনিষ্ঠ পূর্বপুরুষ দাযূদের মতো বা প্রভুর অভিপ্রায় অনুযায়ী জীবনযাপন করেন নি| 2 আহস ইস্রায়েলের রাজাদের খারাপ দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে জীবনযাপন করেছিলেন| তিনি বালদেবতাদের আরাধনার জন্যও মূর্ত্তিসমূহ বানিয়েছিলেন| 3 এছাড়া ইস্রায়েলীয়দের তাড়াবার আগে প্রভু যে কনানীয জাতিদের তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের ঘৃণ্য আচরনের মত আহস বিন্-হিন্নোমের উপত্যকায ধুপধূনো দিয়েছিলেন ও তাঁর নিজের পুত্রদের আগুনে উত্সর্গ করেছিলেন| 4 বলিদান করা ছাড়াও আহস উঁচু বেদীগুলোয পাহাড়ে এবং প্রত্যেকটি সবুজ গাছের তলায় ধুপধূনো দিতেন| 5 যেহেতু আহস এই সমস্ত পাপাচরণে লিপ্ত হয়েছিলেন সেহেতু প্রভু, তাঁর ঈশ্বর অরাম রাজের হাতে তাঁকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন| আহসের বহু সৈন্যকে বন্দী করে অরামরাজ তাদের দম্মেশকে নিয়ে যান| উপরন্তু, ইস্রায়েলের রাজা রমলিযর পুত্র পেকহর হাতেও আহসের পরাজয় ঘটে| পেকহ ও তাঁর সেনাবাহিনী মিলে একদিনের মধ্যে যিহূদার 1,20,000 হাজার বীর সেনাকে হত্যা করেছিলেন| পেকহ এদের পরাজিত করতে পেরেছিলেন কারণ এরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিল| 6 7 ইফ্রয়িম থেকে একজন শক্তিশালী য়োদ্ধা সিখ্রি, আহসের পুত্র মাসেযকে, প্রাসাদের অধ্যক্ষ অস্রীকামকে আর কর্তৃত্বে যিনি ছিলেন রাজার পরেই সেই ইল্কানাকে হত্যা করেন| 8 ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনী যিহূদায় বসবাসকারী তাদের 2,00,000 আত্মীযস্বজনকে বন্দী করা ছাড়াও যিহূদা নারী ও শিশুসহ বহু মূল্যবান জিনিসপত্র অপহরণ করে শমরিয়াতে নিয়ে এসেছিল| 9 কিন্তু সে সমযে, ওদেদ নামে এক প্রভুর ভাব্বাদী বিজয়ী ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীকে বললেন, “তোমাদের পূর্বপুরুষের দ্বারা পূজিত প্রভুর কৃপায় তোমরা যিহূদাকে হারাতে পেরেছো কারণ তিনি তাদের ওপর রুদ্ধ হয়েছিলেন| কিন্তু তোমরা খুব নিষ্ঠুর ও র্ব্বরোচিতভাবে যিহূদার সৈন্যদের হত্যা করেছো, তাই এখন প্রভু তোমাদের ওপর রুদ্ধ হয়েছেন| 10 তোমরা যিহূদা এবং জেরুশালেমের বন্দীদের এীতদাস হিসেবে রাখবার পরিকল্পনা করেছিলে| কিন্তু তোমরা নিজেরাই প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছ| 11 এখন আমার কথা শোনো| তোমরা তোমাদের বন্দী ভাই-বোনদের মুক্তি দাও কারণ এই অপরাধের জন্য প্রভু তোমাদের প্রতি খুবই রুদ্ধ হয়েছেন|” 12 সেই সময য়িহোহাননের পুত্র অসরিয়, মশিল্লেমোতের পুত্র বেরিখিয, শল্লুমের পুত্র য়িহিষ্কিয় এবং হদ্লযের পুত্র অমাসা প্রমুখ ইফ্রয়িমের সৈন্যবাহিনীর এইসব নেতারা যুদ্ধ থেকে একদল ইস্রায়েলীয় সৈনিকদের ঘরে ফিরতে দেখে তাদের সতর্ক করে দিলেন| 13 তাঁরা ইস্রায়েলীয় সেনাদের বললেন, “যিহূদা থেকে কাউকে আর বন্দী করে এখানে নিয়ে এসো না কারণ তাতে প্রভুর প্রতি আমাদের পাপের বোঝা উত্তরোত্তর বাড়বে| এতে প্রভু আমাদের ও ইস্রায়েলের প্রতি খুবই ক্ষুব্ধ হবেন|” 14 তখন সেনারা তাদের নেতাদের হাতে সমস্ত বন্দীদের ও যাবতীয় লুঠ করা সম্পদ তুলে দিল| 15 বেরিখিয, য়িহিষ্কিয় এবং অমাসা নেতৃগণ ইস্রায়েলীয়রা যে সমস্ত পোশাকআশাক এনেছিল তা থেকে উলঙ্গ বন্দীদের পরবার জন্য পোশাক দিলেন ও তাদের পরিচর্য়া করতে লাগলেন| বন্দীদের সবাইকে খাবার ও পানীয় দেওয়া হল এবং তাদের মধ্যে যারা আহত হয়েছিল তাদের ক্ষতস্থানে তেল লাগিয়ে দেওয়া হল| তারপর নেতারা সমস্ত বন্দীদের, যারা খুব দুর্বল ছিল তাদের গাধার পিঠে তুলে দিলেন এবং তাদের বাড়ির কাছে ‘তালগাছের দেশ’ য়িরীহোতে তাদের নিয়ে গেলেন এবং শমরিয়াতে ফিরে এলেন| 16 এই সমযে, ইদোমীয় সেনাবাহিনী আবার ফিরে এলো এবং যিহূদাকে অন্য একটি যুদ্ধে পরাজিত করে এবং তাদের বন্দীদের ইদোমে নিয়ে যায়| তখন রাজা আহস অশূররাজের সাহায্য প্রার্থনা করলেন| 17 18 পলেষ্টীয়রাও এসে দক্ষিণ যিহূদা ও যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলে বৈত্শেমশে, অযালোন, গদেরোত্, সোখো, তিথা, গিম্সো প্রমুখ শহর ও এইসব শহরের পাশ্ববর্তী গ্রামগুলো দখল করে বসবাস করতে শুরু করলো| 19 রাজা আহস যিহূদার লোকদের পাপের পথে পরিচালনা করার জন্যই প্রভু যিহূদাকে সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন| আহস প্রভুতে মোটেই বিশ্বাসী ছিলেন না| 20 সাহায্যের পরিবর্তে অশূররাজ তিল্গত্ পিল্নেষর এসে আহসের সঙ্কট আরো বাড়িযে তুলেছিলেন| 21 প্রভুর মন্দির, রাজপ্রাসাদ ও রাজপুত্রদের থাকা জায়গা থেকে বহু মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে সেসব অশূররাজকে দিয়েও আহস তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারেন নি| 22 সঙ্কটাবস্থায আহস আরো বেশি করে পাপাচরণ ও প্রভুর প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে শুরু করেন| 23 তিনি দম্মেশকের লোকদের দেবতার কাছে বলিদান নিবেদন করলেন| তাদের হাতে পরাজিত হয়ে আহস ভাবলেন, “তাহলে আমি অরামের দেবতার আরাধনা করি ও তাঁর কাছে বলিদান করি, তাহলে নিশ্চয়ই এইসব দেবতাগণ ও তাদের উপাসকরা আমাকে সাহায্য করবে|” যাই হোক, তাঁরা তাঁকে সাহায্য করতে পারেন নি এবং তাঁর পতন ঘটিযেছিলেন| এবং তাঁর সঙ্গে, সমগ্র ইস্রায়েলের পতন হয়েছিল| 24 ঈশ্বরের মন্দির থেকে সমস্ত জিনিসপত্র জড়ো করে আহস সেই সমস্ত টুকরো টুকরো করে ভেঙে প্রভুর মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিলেন| জেরুশালেমের রাস্তার মোড়ে মোড়ে বেদী বানিয়ে 25 যিহূদার সমস্ত শহরগুলিতে আহস অন্য দেবতাদের ধুপধূনা দেবার জন্য উঁচু স্থান বানিয়ে দিলেন| এইভাবে আহস তাঁর পূর্বপুরুষদের প্রভু ঈশ্বরকে অত্যন্ত রুদ্ধ করে তুললেন| 26 রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি আর যা কিছু আহস করেছিলেন সেসবই ‘যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ করা আছে| 27 আহসের মৃত্যুর পর তাঁকে জেরুশালেমে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়| তবে তাঁকে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়নি| তাঁর পরে তাঁর পুত্র হিষ্কিয় তার জায়গায় নতুন রাজা হলেন|
1 হিষ্কিয় 25 বছর বয়সে রাজা হয়ে মোট 29 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা অবিয়া ছিলেন সখরিয়র কন্যা| 2 হিষ্কিয় প্রভুর অভিপ্রায় অনুসারে তাঁর পূর্বপুরুষ দাযূদের মতো সত্ ও ধর্মনিষ্ঠভাবে জীবনযাপন করেন| 3 তাঁর রাজত্বকালের প্রথম বছরের, প্রথম মাসের মধ্যেই হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরটি আবার খুলে দিয়েছিলেন এবং মন্দিরের দরজাগুলো মেরামত করে দিয়েছিলেন| 4 যাজক ও লেবীয়দের একত্রিত করে মন্দিরের পূর্ব প্রান্তের খোলা চত্বরে হিষ্কিয় তাঁদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়ে বললেন, “লেবীয়রা শোনো, মন্দিরের সেবা করবার পবিত্র কাজের জন্য তোমরা নিজেদের প্রস্তত কর| প্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের মন্দিরটিকে শুদ্ধ ও পবিত্র করে তোলো| মন্দিরকে অশুদ্ধ ও অপবিত্র করেছে এমন প্রতিটি জিনিষ মন্দির থেকে সরিয়ে দাও| 5 6 আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রভুর অবাধ্য হয়ে জীবন কাটিযেছে| তারা মন্দিরকে অশ্রদ্ধা করে এবং প্রভুর দিক থেকে মুখ ফিরিযে নিয়ে প্রভুর পথ থেকে সরে গেছে| 7 তারা মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে এবং বাতিদানের প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখা নিভিযে দিয়েছে| ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র স্থানের বেদীতে ধুপধূনো দেওয়া আর হোমবলিও তারা বন্ধ করে দিয়েছে| 8 তাই প্রভু, যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর রুদ্ধ হয়ে তাদের শাস্তি দিয়েছেন, যাতে অন্য জাতিরা তাদের ভয়, বিস্ময এবং উপহাসের পাত্র হিসেবে দেখে এবং তোমরা নিজেরা দেখতে পাও যে এ সবই সত্যি| তোমরা জানো এর এক বর্ণও মিথ্য়া নয়, কারণ তোমরা স্বচক্ষে এই ঘটনা দেখেছো| 9 তোমরা দেখেছো যে এ কারণেই আমাদের পূর্বপুরুষদের যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে; এবং আমাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের কারারুদ্ধ করা হয়েছে| 10 একারণে আমি হিষ্কিয় প্রভু ঈস্রাযেলের ঈশ্বরকে আবার নতুন করে প্রতিশ্রুতি দিতে চাই, যাতে তিনি আর আমাদের ওপর রুদ্ধ হয়ে না থাকেন| 11 আমার লোকরা শোন, তোমরা কর্ত্তব্য়ে অবহেলা কোর না| প্রভু তাঁর সেবার জন্য তোমাদের মনোনীত করেছেন| তাঁর মন্দিরে সেবা ও ধুপধূনো দেবার অধিকার তিনি শুধু তোমাদেরই দিয়েছেন|” 12 একথা শুনে নিথলিখিত লেবীয়রা কাজে লেগে গেল: অমাসযের পুত্র মাহত্ এবং কহাত্ পরিবারের অসরিয়ের পুত্র য়োযেল; অব্দির পুত্র কীশ এবং মরারি পরিবারভুক্ত য়িহলিলেলের পুত্র অসরিয়; সিম্মের পুত্র য়োযাহ আর গের্শোন পরিবারের য়োযাহের পুত্র এদন; ইলীষাফণের বংশের শিম্রি ও য়িযূযেল, আসফের পরিবারের সখরিয় ও মত্তনিয, হেমনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়িহূযেল ও শিমিযি, য়িদূথূনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে শময়িয় ও উষীযেল| 13 14 15 তারপর তারা অন্যান্য সমস্ত লেবীয়দের একত্রে জড়ো করে প্রভুর মন্দির আনুষ্ঠানিকভাবে শোধন করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করলেন| রাজার মুখ দিয়ে প্রভুর যে আদেশ এসেছিল তা তাঁরা শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করলেন| 16 যাজকরা প্রভুর মন্দিরের অভ্য়ন্তরভাগে গেলেন| তাঁরা মন্দিরের মধ্যে যে সমস্ত অশুচি জিনিসপত্র ছিল সে সমস্ত বের করে মন্দিরের উঠোনে আনলেন| তারপর লেবীয়রা সেসব কিদ্রোণ উপত্যকায নিয়ে গেলেন এবং তার মধ্যে ফেলে দিলেন| 17 প্রথম মাসের প্রথম দিনে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দিরের শোধনের কাজ শুরু করেছিলেন| ঐ মাসেরই অষ্টম দিনে তাঁরা মন্দিরের প্রবেশ পথে এসে উপস্থিত হলেন এবং তারপর আরো আটদিন ধরে মন্দিরের শুচিকরণের কাজ করে গেলেন| সেই মাসের 16 দিনের মাথায় সমস্ত কাজ শেষ হয়েছিল| 18 এরপর তারা রাজা হিষ্কিয়র কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, “আমরা প্রভুর মন্দিরটি আগাগোড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেছি| হোমবলি নিবেদনের জন্য বেদী ও অন্যান্য যা কিছু, যেমন রুটি রাখার জন্য টেবিল এবং সেখানে ব্যবহৃত বাসনকোসন পরিষ্কার ও পবিত্র করেছি| 19 রাজা আহস ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করার পরে তিনি মন্দিরের জিনিসপত্র এবং আসবাবপত্রগুলিকে অবহেলা করেছিলেন| আমরা এসব জিনিষ শুদ্ধ করেছি এবং সেগুলো প্রভুর বেদীর সামনে সাজিযে রেখেছি|” 20 পরদিন ভোরবেলা, রাজা হিষ্কিয় শহরের সমস্ত উচ্চপদাধিকারী কর্মচারীদের নিয়ে মন্দিরে গেলেন| 21 রাজপরিবারের, পবিত্রস্থানের এবং যিহূদার লোকদের পাপমোচনের নৈবেদ্য হিসেবে তাঁরা সাতটা ষাঁড়, সাতটা মেষ, সাতটা মেষশাবক এবং সাতটা পুং ছাগল এনেছিলেন| রাজা হিষ্কিয় হারোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের ঐ প্রাণীগুলিকে প্রভুর বেদীতে বলি দিতে আদেশ দিলেন| 22 তাই যাজকরা প্রথমে ষাঁড়গুলি বলি দিয়ে প্রভুর বেদীতে সেই রক্ত ছিটিয়ে দিলেন| 23 অনুরূপভাবে যাজক সাতটা মেষ, সাতটা মেষশাবক আর সাতটা ছাগল ছানাকে পরপর বলি দিয়ে বেদীতে তাদের রক্ত ছিটিয়ে তা পবিত্র করলেন যাতে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের তাদের পাপ থেকে মুক্তি দেন| রাজা সমস্ত ইস্রাযেলবাসীদের হয়ে এই পাপমোচনের নৈবেদ্য ও হোমবলি নিবেদনের নির্দেশ দিয়েছিলেন| 24 25 এরপর মহারাজ হিষ্কিয় মহাসমারোহে রাজা দাযূদের ভাব্বাদী গাদ ও নাথনের দেওয়া আদেশ অনুযায়ীখোল-কর্তাল, বীণা, তানপুরা বাজাতে বাজাতে লেবীয়দের আবার প্রভুর মন্দিরে পাঠালেন| এভাবে তাঁদেরকে মন্দিরে পাঠানোর নির্দেশ প্রভু তাঁর ভাব্বাদীদের মুখ দিয়ে পাঠিয়েছিলেন| 26 লেবীয়রা সকলে দাযূদের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে এবং যাজকরা শিঙা নিয়ে প্রস্তুত হলেন| 27 তারপর রাজা হিষ্কিয় বেদীতে হোমবলি উত্সর্গের নির্দেশ দিলেন| হোমবলিগুলির উত্সর্গ যখন শুরু হল, তারা প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাওযা শুরু করলো| রাজা দাযূদের বানানো ভেরী ও বাদ্যযন্ত্রগুলি বাজানো হল| 28 যখন বাদ্যযন্ত্রগুলি বাজতে লাগল এবং গায়করা গান করতে লাগলেন তখন সমস্ত লোক, য়াঁরা ওখানে জড়ো হয়েছিলেন তাঁরা প্রভুর উপাসনা করলেন| হোমবলি উত্সর্গ শেষ না হওয়া পর্য়ন্ত তাঁরা উপাসনা করে গেলেন| 29 বলিদানের কাজ শেষ হলে হিষ্কিয় সহ অন্যান্য সকলেই আভূমি নত হয়ে উপাসনা করলেন| 30 যখন রাজা হিষ্কিয় ও পদস্থ ব্যক্তিরা তাঁদের প্রভুর প্রশংসা করে গান গাইতে নির্দেশ দিলেন তাঁরা দায়ূদ ও ভাব্বাদী আসফের লেখা গানগুলো গাইলেন| প্রভুর প্রশংসা করে ও তাঁর সামনে মাথা নত করে তাঁরা সকলেই আনন্দিত হয়ে উঠলেন| 31 হিষ্কিয় বললেন, “যিহূদাবাসীরা শোনো, তোমরা নিজেদেরকে প্রভুর চরণে নিবেদন করলে| এসো তোমরা প্রভুর উদ্দেশ্যে দেওয়ার জন্য আরো বলির জীব ও ধন্যবাদ নৈবেদ্য নিয়ে এসো|” তখন সকলে যার যেমন ইচ্ছে প্রভুর জন্য নৈবেদ্য ও হোমবলি নিয়ে এলো| 32 সেদিন, হোমবলি হিসেবে মোট 70টি ষাঁড়, 100টি মেষ এবং 200টি মেষশাবক প্রভুর কাছে নিবেদিত হল| 33 পবিত্র নৈবেদ্য হিসেবে নিবেদিত হল 600টি ষাঁড় ও 3,000 মেষ| 34 হোমবলির নিমিত্তে সমস্ত জন্তুদের ছাল ছাড়ানো ও কাটবার জন্য যাজকেরা সংখ্যায় খুব কমই ছিলেন| তাই তাঁদের আত্মীযবর্গ, লেবীয়রা সাহায্য করতে এলেন যতক্ষণ না কাজটি শেষ হয় এবং যতক্ষণ না যাজকরা নিজেদের শুদ্ধ করেন, কারণ যাজকদের থেকে লেবীয়রা নিজেদের শুদ্ধ করতে বেশী বিশ্বস্ত ছিলেন| 35 বহু পরিমাণ হোমবলি ছাড়াও, শান্তি নৈবেদ্য এবং পেয নৈবেদ্যর জন্য প্রচুর চর্বি ছিল যেগুলি হোমবলির সঙ্গে দেওয়ার জন্য ছিল| প্রভুর মন্দিরের নিত্যকর্ম আবার শুরু হল| 36 হিষ্কিয় ও তাঁর প্রজারা সকলে ঈশ্বর যে ভাবে অতি দ্রুত তাদেরকে তাঁর সেবার জন্য প্রস্তুত করেছেন তা ভেবে খুবই আনন্দিত হলেন|
1 রাজা হিষ্কিয় ইস্রাযেল ও যিহূদায় প্রত্যেককে বার্তা পাঠালেন এবং ইফ্রয়িম ও মনঃশির লোকেদের চিঠি লিখে দিলেন প্রভুর মন্দিরে আসার জন্য, যাতে তাঁরা সবাই প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য নিস্তারপর্ব উদয়াপন করতে পারেন| 2 তিনি তাঁর সমস্ত উচ্চপদস্থ কর্মচারী এবং জেরুশালেমে সমবেত লোকেদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন এবং দ্বিতীয় মাসে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করবেন বলে স্থির করলেন| 3 যেহেতু যাজকদের অধিকাংশ এই পবিত্র সেবা অনুষ্ঠান উদ্য়াপনের জন্য তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না, এবং লোকরা তখনও জেরুশালেমে সমবেত হয় নি, সেহেতু নির্ধারিত সমযে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করা গেল না| 4 তবে তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাতে হিষ্কিয় সহ সমবেত সকলেই সন্তুষ্ট হয়েছিলেন| 5 এবং বের্-শেবা থেকে শুরু করে দান শহর পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের সর্বত্র সকলকে জেরুশালেমে এসে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নিস্তারপর্বে য়োগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হল| ইস্রায়েলের লোকদের একটা বড় অংশ দীর্ঘদিন যাবত্ মোশির বর্ণিত বিধি অনুযায়ীনিস্তারপর্ব পালন করেন নি| 6 তাই বার্তাবাহকরা ইস্রাযেল ও যিহূদার সর্বত্র রাজা হিষ্কিয়র চিঠি নিয়ে গেল যাতে জানানো হল:“ইস্রায়েলের সন্ততিরা, তোমরা অব্রাহাম, ইস্হাক ও ইস্রায়েলের আরাধ্য ঈশ্বরের দিকে মুখ ফেরাও| একমাত্র তাহলেই তোমরা যারা অশূররাজের সৈন্যদল থেকে পালিয়ে এসেছ, তাদের প্রতি তিনি করুণা পরবশ হবেন| 7 তোমাদের পূর্বপুরুষ এবং সহনাগরিকদের মতো আচরণ কোরো না| তাঁরা তাদের পিতার ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছিলেন| তাই প্রভু তাদের ধ্বংস হতে দিয়েছিলেন| এসবই তোমরা নিজেদের চোখে দেখেছো| 8 তোমাদের এইসব পূর্বপুরুষদের মতো গোঁযার্তুমি না করে সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে প্রভুর বন্দনা করো| প্রভু তাঁর আশীর্বাদে যে পবিত্রতম স্থানকে চিরপবিত্র করে তুলেছেন সেখানে এসে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সেবা করো| একমাত্র তাহলেই প্রভুর রোষদৃষ্টির হাত থেকে তোমরা অব্যাহতি পাবে| 9 তোমরা যদি তাঁর চরণতলে ফিরে এসে তাঁকে অনুসরণ করো তাহলে তোমাদের আত্মীযস্বজন ও সন্তানসন্ততিদের অপহরণকারীরা তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করবেন এবং তারা সকলে আবার এই দেশে ফিরে আসতে পারবে| তোমাদের প্রভু দয়ালু এবং করুণাময| তোমরা যদি তাঁর কাছে ফিরে আসো তিনি কখনোই তোমাদের দিক থেকে মুখ ফেরাবেন না|” 10 বার্তাবাহকরা সবূলূন পর্য়ন্ত ইফ্রয়িম ও মনঃশির সর্বত্র প্রত্যেকটা শহরে এই আবেদন নিয়ে গেল| কিন্তু লোকেরা এর কোনো গুরুত্ব না দিয়ে এই আবেদন ও বার্তাবাহকদের নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করতে শুরু করলো| 11 তবে আশের মনঃশি ও সবূলূনের বিভিন্ন অঞ্চলের কিছু ব্যক্তি পরম দীনের মতো জেরুশালেমে এসে উপস্থিত হল| 12 এমনকি যিহূদাতেও প্রভু এমনভাবে চলেছিলেন যাতে সমস্ত লোক, রাজা ও তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের মেনে চলতে রাজী হল| 13 দ্বিতীয় মাসে বহু ব্যক্তি জেরুশালেমে খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করতে এলো| 14 এরা সকলে জেরুশালেমের ভ্রান্ত দেবদেবীদের জন্য বানানো বেদী ও ধুপধূনো দেবার বেদীগুলো ভেঙে কিদ্রোণ উপত্যকায ফেলে দিল| 15 দ্বিতীয় মাসের 14 দিনের দিন এরা নিস্তারপর্বের নৈবেদ্যটি বলি দিলেন| যাজকগণ ও লেবীয়রা লজ্জিত মনে সেবার কাজের জন্য প্রস্তুত হলেন কারণ তাঁরা অনুষ্ঠানটির জন্য যথায়থভাবে পবিত্র ছিলেন না| তাঁরা প্রভুর মন্দিরে হোমবলি নিয়ে এলেন| 16 মোশির বিধি অনুযাযী, তাঁরা মন্দিরে তাঁদের নির্ধারিত জায়গাগুলি গ্রহণ করলেন| লেবীয়রা যাজকদের হাতে রক্তের পাত্র তুলে দেবার পর যাজকরা সেই রক্ত বেদীতে ছিটিয়ে দিলেন| 17 উপস্থিত লোকদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন য়াঁরা এই পবিত্র সেবার কাজের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেন নি| এরকম লোকদের জন্য, লেবীয়রা নিস্তারপর্বের নৈবেদ্যটি বলিদান করলেন| 18 এরকম করা হল যেহেতু ইফ্রয়িম, মনঃশি, ইষাখর ও সবূলূনের অনেকেই নিস্তারপর্বের ভোজসভায য়োগদানের জন্য নিজেদের শুচি করেন নি এবং মোশির বিধি অনুযায়ীতাঁরা এটি পালন করেন নি| কিন্তু তারাও য়োগদান করলেন, কারণ হিষ্কিয় প্রার্থনা করে বললেন, “হে প্রভু, তুমি মঙ্গলময| এরা সকলেই সর্বান্তঃকরণে তোমার উপাসনা করতে চাইলেও বিধি অনুযায়ীনিজেদের শুচি করে নি| তুমি এদের ক্ষমা করো| তুমি আমাদের পূর্বপুরুষের আরাধ্য ঈশ্বর| এরা যদি এই পবিত্রতম স্থানের জন্য উপযুক্তভাবে নিজেদের শুদ্ধ করে নাও থাকে, তাহলেও তুমি এদের সবাইকে, যারা সমস্ত হৃদয় দিয়ে তোমাকে চায, ক্ষমা করে দিও|” 19 20 প্রভু রাজা হিষ্কিয়ের় প্রার্থনায সাড়া দিয়ে এদের সবাইকে ক্ষমা করে দিলেন| 21 ইস্রায়েলের বাসিন্দারা সাতদিন ধরে মহাসমারোহে ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে জেরুশালেমে খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করলো| লেবীয় ও যাজকরা প্রত্যেকদিন তাঁদের সাধ্যমতো প্রভুর প্রশংসা করলেন| 22 যে সমস্ত লেবীয়রা প্রভুর সেবা কাজের অনুধাবন করেছিলেন রাজা হিষ্কিয় তাদের সবাইকে উত্সাহিত করতে লাগলেন| সাতদিন এই উত্সব পালনের পর লোকরা নিস্তারপর্বের নৈবেদ্য উত্সর্গ করলো| তারা তাদের পূর্বপুরুষের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা ও তাঁর প্রতি তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলো | 23 তখন সমস্ত লোক আরো সাতদিন থাকতে রাজী হল| আরো সাতদিন ধরে তারা আনন্দের সঙ্গে নিস্তারপর্ব পালন করলো| 24 যিহূদার রাজা হিষ্কিয়, যাতে এটি সম্ভব হয় তার জন্য 1,000 ষাঁড়, 7,000 মেষ উপস্থিত লোকদের খাবার জন্য দান করলেন| নেতারা সকলে আরো 1,000 ষাঁড় আর 10,000 মেষ দান করলেন| সমস্ত যাজকরা পবিত্র সেবার কাজের জন্য নিজেদের শুদ্ধ করলেন| 25 উপস্থিত প্রত্যেকে, যিহূদার প্রত্যেক যাজকগণ ও লেবীয়রা, ইস্রাযেল থেকে যিহূদায় আসা বহিরাগতরা, অন্যান্য প্রত্যেকে যারা ইস্রাযেল থেকে এসেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকেই খুশী ও আনন্দের সঙ্গে উত্সব পালন করলেন| 26 তাই জেরুশালেমের সর্বত্র তখন খুশীর বন্যা কারণ ইস্রায়েলের রাজা, দাযূদের পুত্র, শলোমনের সময় থেকে জেরুশালেমে এরকম কোনো উত্সব আর কখনও হয়নি| 27 যাজকগণ ও লেবীয়রা উঠে দাঁড়ালেন এবং লোকদের আশীর্বাদ করার জন্য প্রার্থনা করলেন| প্রভু স্বর্গে তাঁর পবিত্র বাসস্থান থেকে তাঁদের সেই প্রার্থনা শুনতে পেলেন|
1 যখন নিস্তারপর্বের উত্সব উদয়াপন শেষ হল, তখন নিস্তারপর্বের জন্য যে সমস্ত ইস্রাযেলবাসী জেরুশালেমে উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁরা যিহূদার বিভিন্ন শহরগুলিতে গেলেন এবং পাথরের তৈরী মূর্ত্তিগুলো ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করলেন| আশেরার খুঁটি উপড়ে ফেলে যিহূদা ও বিন্যামীনের সর্বত্র উচ্চ স্থলগুলি ভেঙ্গে দেওয়া হল| ইফ্রয়িম ও মনঃশিতেও একই জিনিস করা হল| মূর্ত্তি পূজোর যাবতীয় চিহ্ন নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্য়ন্ত লোকেরা এইসব করে যেতে লাগলো| তারপর ইস্রায়েলীয়রা নিজেদের শহরে যে যার বাড়িতে ফিরে গেল| 2 যাজকগণ ও লেবীয়দের কযেকটি দলে বিভক্ত করা হয়েছিল এবং প্রত্যেকটি বিভাগের জন্য কাজের সংজ্ঞা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল| রাজা হিষ্কিয় এই সমস্ত দলের সবাইকে আবার নিজেদের কর্তব্য করতে আদেশ দিলেন| যাজক ও লেবীয়রা আবার নৈবেদ্য, হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদনের কাজে নিযুক্ত হলেন| মন্দিরের সেবা করা ছাড়াও তারা প্রভুর গৃহে ভক্তিগীতি ও প্রশংসা গান করতেন| 3 হিষ্কিয় হোমবলি হিসেবে তাঁর নিজস্ব কিছু পশু নিবেদন করলেন| প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায এইসব পশুদের হোমবলি হিসেবে বলি দেওয়া হতো| প্রভুর বিধি অনুযায়ীপ্রতি বিশ্রামের দিন অমাবস্যার উত্সবের দিন এবং উত্সবের দিনে এইসব পশু বলিদান করা হতো| 4 নিয়ম অনুযায়ীলোকরও তাদের শস্যের একটি নির্ধারিত অংশ ও অন্যান্য জিনিসপত্র যাজক ও লেবীয়দের দেবার কথা ছিল| হিষ্কিয় জেরুশালেমের সবাইকে সেই নিয়ম মেনে চলতে আদেশ দিলেন, যাতে যাজকগণ ও লেবীয়রা তাঁদের ওপর ন্যাস্ত কাজ অবিক্ষিপ্ত মনোয়োগে স্বচ্ছন্দে করতে পারেন| 5 দেশের সর্বত্র লোকরা রাজার এই আদেশের কথা শুনলেন| যে মূহুর্তে ইস্রায়েলীয়রা এই আদেশ শুনলো, তারা তাদের শস্য, দ্রাক্ষারস, তেল ও মধুর ফলনের প্রথমভাগ থেকে উদারভাবে দান করল; তারা যা কিছু এনেছিল তার এক-দশমাংশ দিয়ে দিল| 6 ইস্রাযেল ও যিহূদার শহরাঞ্চলে বসবাসকারী লোকরা তাদের গবাদি পশুর এক-দশমাংশ ও অন্যান্য সামগ্রী ও একই পরিমাণে নিয়ে গ্রামে প্রভু ঈশ্বরের জিনিসপত্র রাখার জন্য নির্ধারিত একটি বিশেষ জায়গায় স্তূপীকৃত করলো| 7 তৃতীয় মাস অর্থাত্ মে-জুন থেকে শুরু করে সপ্তম মাস অর্থাত্ সেপেটম্বর-অক্টোবর পর্য়ন্ত এইভাবে দানসামগ্রী সংগ্রহ করা হল| 8 যখন হিষ্কিয় আর অন্যান্য নেতারা এসে সেই স্তূপাকার জিনিষ যেগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল, দেখলেন, তারা প্রভু আর তাঁর ইস্রায়েলের লোকদের ধন্যবাদ জানালেন| 9 এরপর, হিষ্কিয় যখন স্তূপীকৃত দান সামগ্রী সম্পর্কে যাজকগণ ও লেবীয়দের রশ্ন করলেন, 10 প্রধান যাজক, সাদোক বংশের অসরিয় বললেন, “যেদিন থেকে লোকরা প্রভুর মন্দিরের জন্য দান করতে শুরু করেছে সেই সময় থেকে আমরা কেবল খেযেই চলেছি | কিন্তু আমরা পেট ভরে খাবার পরও এখনও য়থেষ্ট খাবার দাবার পড়ে রযেছে| প্রভু সত্যি সত্যিই তাঁর সেবকদের প্রতি সদয তাই এতো সমস্ত খাবারদাবার সংগ্রহ হয়েছে|” 11 হিষ্কিয় যাজকদের মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরগুলো ঠিকঠাক করতে বললেন| সে কাজ হয়ে গেলে, 12 যাজকরা লোকদের দান ও এক-দশমাংশ ও অন্যান্য যা কিছু প্রভুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়েছিল তা বিশ্বস্তভাবে নিয়ে এসে মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরগুলোয রাখলেন| লেবীয়-কনানীয ছিলেন এই সমস্ত সংগৃহীত জিনিসপত্রের দায়িত্বে| এ ব্যাপারে তাঁর সহকারী ছিলেন তাঁর ভাই শিমিযি| 13 কনানীয আর তাঁর ভাই শিমিযির তত্ত্বাবধানে কাজ করেছিলেন যাজক য়িহীযেল, অসসিয, নহত্, অসাহেল, য়িরীমোত্, য়োষাবদ, ইলীযেল, য়িষ্মখিয, মাহত্, বনায| রাজা হিষ্কিয় ও ঈশ্বরের মন্দিরের অধ্যক্ষ অসরিয় দুজনে মিলে এই সমস্ত লোকদের বেছে নিয়েছিলেন| 14 য়িথার পুত্র কোরি,- মন্দিরের পূর্ব প্রান্তের দ্বাররক্ষী লোকদের ঈশ্বরকে দেওয়া দান এবং পবিত্রতম নৈবেদ্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন| 15 এদন, মিন্যামীন, যেশূয, শময়িয়, অমরিয আর শখনিয এই সংগৃহীত জিনিসগুলি তাদের আত্মীযদের মধ্যে তাদের বিভাজন অনুযাযী, নবীন ও প্রবীণ উভয়কেই বিশ্বস্তভাবে বিতরণ করেছিলেন| 16 যে সব পুরুষ তিন বছর ও তার উর্দ্ধ বয়সের ছিল এবং যাদের নাম বংশ তালিকায ছিল, তারাও এই জিনিষগুলি পেয়েছিল| তাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে হত এবং তাদের বিভাজন অনুসারে তাদের যে সব নিত্য কর্মের দায়িত্ব ছিল তা করতে হত| 17 যাজকদের প্রত্যেককে তাদের প্রাপ্য সামগ্রী দেওয়া হল| এসব কাজ পারিবারিক নথিপত্রে লিপিবদ্ধ পরিবারের নাম দেখে বিধি মতো করা হয়েছিল লেবীয়দের মধ্যে যাদের বয়স 20 বা তার বেশী তারা সকলেই গুরুত্ব ও গোষ্ঠী অনুযায়ীতাদের জন্য নির্ধারিত দানসামগ্রী পেয়েছিলেন| 18 এমনকি লেবীয় পরিবারের স্ত্রী ও পুত্রকন্যারাও দানসামগ্রীর অংশবিশেষ লাভ করেছিলেন| পারিবারিক নথিপত্রে যে সমস্ত লেবীয় পরিবারের নাম ছিল তাঁরা কেউই এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হননি| কারণ লেবীয়রা সব সমযেই একনিষ্ঠ ও পবিত্র মনে সেবার কাজের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতেন| 19 হারোণের উত্তরপুরুরদের মধ্যে কিছু যাজকদের শহরের কাছে চাষবাসের জমি ছিল যেখানে তাঁরা বাস করতেন| এই শহরগুলির প্রত্যেকটি থেকে সুনাম আছে এমন লোকদের হারোণের উত্তরপুরুষদের মধ্যে এবং লেবীয়দের পারিবারিক ইতিহাসে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত তাদের মধ্যে দানসামগ্রী বিলি-বণ্ট্নের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল| 20 রাজা হিষ্কিয় যিহূদায় এই সমস্ত ভাল ভাল কাজ করেছিলেন| তিনি তাঁর প্রভু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা কিছু ভাল ও মঙ্গলজনক সেই সমস্ত কাজ করেছিলেন| 21 তিনি যে যে কাজে হাত দিয়েছিলেন প্রভুর মন্দিরের সংষ্কার থেকে শুরু করে বিধি নির্দেশ পালন করা, ঈশ্বরকে অনুসরণ করে চলা সব কিছুতেই সাফল্য লাভ করেছিলেন| হিষ্কিয় সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে এই সমস্ত কর্তব্য পালন করেছিলেন|
1 রাজা হিষ্কিয় এই সমস্ত কর্তব্য সুষ্ঠভাবে পালন ও সমাধা করার পর অশূররাজ সন্হেরীব যিহূদা আক্রমণ করতে আসেন| সন্হেরীব তাঁর সেনাবাহিনী সহ দুর্গ দ্বারা সুরক্ষিত যিহূদা শহরের বাইরে তাঁবুসমূহ গেড়েছিলেন কারণ তিনি সেগুলি নিজের জন্য দখল করতে চেয়েছিলেন| 2 যখন হিষ্কিয় জানতে পারলেন যে সন্হেরীব জেরুশালেম আক্রমণ করতে এসেছেন, 3 হিষ্কিয় তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মচারী ও সৈন্যাধ্যক্ষদের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করলেন দুর্গের বাইরের ঝর্ণার জলধারা বন্ধ করে দেবেন| 4 তখন সকলে মিলে দূর্গের বাইরে সমস্ত ঝর্ণা আর যিহূদার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত নদীর জল বন্ধ করার ব্যবস্থা করলেন| তাঁরা বললেন, “অশূররাজ এখানে আসুন এবং দেখুন কত জলকষ্ট আছে|” 5 হিষ্কিয় জেরুশালেমের প্রাচীরের ভেঙে যাওয়া অংশ মেরামত করে প্রাচীরের ওপর নজরদারি স্তম্ভ বসিযে জেরুশালেমের সুরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ় করলেন| উপরন্তু, তিনি প্রথম প্রাচীরের চতুর্দিকে আরেকটা দেওয়াল তুলে পূর্ব দিকের পাঁচিল শক্ত করে গাঁথলেন| অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও ঢালও বানালেন| 6 যুদ্ধের সৈন্যাধ্যক্ষদের ওপর তিনি সাধারণ লোকদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিলেন| তিনি শহরের প্রবেশ পথে এই সমস্ত সৈন্যাধ্যক্ষদের সঙ্গে দেখা করে তাদের উত্সাহ দিয়ে বললেন, “শক্তিশালী এবং সাহসী হও| অশূররাজের বিশাল সেনাবাহিনীর কথা ভেবে ভয় পাবার কোনো কারণ নেই| অশূররাজের থেকেও বড় শক্তি আমাদের সঙ্গে আছেন| 7 8 অশূররাজের শুধু সৈন্যই আছে কিন্তু আমাদের সঙ্গে আমাদের প্রভু ঈশ্বর আছেন| তিনি আমাদের সাহায্য করবেন এবং আমাদের জন্য যুদ্ধ করবেন|” এই ভাবে যিহূদারাজ হিষ্কিয় সকলকে অনুপ্রাণিত করে তাদের মনের জোর বাড়িযে দিলেন| 9 ইতিমধ্যে, অশূররাজ সন্হেরীব আর তাঁর সেনারা লাখীশ শহরের কাছে শহরটা দখল করার জন্য তাঁবু ফেলেছিলেন| তখন সন্হেরীব রাজা হিষ্কিয় ও যিহূদার লোকদের কাছে একটি খবর পাঠালেন যাতে বলা হল, 10 ‘কোন বিশ্বাস এবং অবলম্বনের ওপর তোমরা ভরসা করছ যে তোমরা অবরুদ্ধ জেরুশালেমে রয়েছ? 11 হিষ্কিয় তোমাদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে| চালাকি করে সে তোমাদের জেরুশালেমে আটকে রেখেছে, যাতে তোমরা খাবার ও জলের অভাবে বেঘোরে মারা পড়| হিষ্কিয় তোমাদের বলছে, “আমাদের প্রভু ঈশ্বর অশূররাজের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করবেন|” 12 আর এদিকে ও নিজে প্রভুর সমস্ত উচ্চস্থান ও বেদী ভেঙ্গে দিয়ে যিহূদা আর জেরুশালেমের লোকদের একটিমাত্র বেদীতে উপাসনা করতে ও ধুপধূনো দিতে বলছে| 13 তোমরা সকলে নিশ্চয়ই জানো আমি ও আমার পূর্বপুরুষরা অন্যান্য রাজ্যের লোকদের কি অবস্থা করেছি| এমন কি ঐ সব দেশের দেবতারাও সেসব লোককে আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি| 14 আমার পূর্বপুরুষরা একের পর এক রাজ্য ধ্বংস করেছেন| এমন কোনো দেবতা নেই যিনি আমাকে তাঁর ভক্তদের হত্যা করার থেকে থামাতে পারেন| তোমরা ভাবছো তোমাদের দেবতা তোমাদের আমার হাত থেকে বাঁচাতে পারবে? 15 হিষ্কিয়র চালাকির ফাঁদে পড়ো না| কারণ কোনো দেশের কোনো দেবতাই তাঁর ভক্তদের আমার বা আমার পূর্বপুরুষের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি| ভুলেও ভেবো না যে তোমাদের প্রভু তোমাদের মৃত্যু আটকাতে পারবে|”‘ 16 অশূররাজের পদস্থ কর্মচারীরা সকলে প্রভু ঈশ্বর ও তাঁর দাস হিষ্কিয়র বিরুদ্ধে আরো নানা ধরণের বিরূপ মন্তব্য করেছিল| 17 অশূররাজ তাঁর চিঠিতেও প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর সম্পর্কে বিভিন্ন অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন| তিনি চিঠিতে লিখেছিলেন: “অন্য দেশের দেবতারা যেমন তাদের ভক্তদের আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি, সে রকমই হিষ্কিয়র দেবতাও আমার হাত থেকে ওর ভক্তদের একটাকেও বাঁচাতে পারবে না|” 18 এরপর সন্হেরীবের আধিকারিকরা দুর্গপ্রাকারের ওপর যে সমস্ত জেরুশালেমের লোক দাঁড়িয়েছিলেন তাদের ভয় দেখানোর জন্য হিব্রু ভাষায় চেঁচিয়ে উঠলেন যাতে তিনি নগরীটি দখল করতে পারেন| 19 তারা জেরুশালেমের ঈশ্বর সম্পর্কেও এমনভাবে কথা বলল যেন তিনি অন্যান্য জাতির সেই সমস্ত দেবতাদের একজন যাদের মানুষ হাতে করে তৈরী করেছে| 20 রাজা হিষ্কিয় আর আমোসের পুত্র ভাব্বাদী যিশাইয় তখন এই সঙ্কটের থেকে রক্ষা পেতে উচ্চস্বরে স্বর্গের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করলেন| 21 এবং প্রভু অশূররাজের শিবিরে একজন দূত পাঠালেন| সেই দূত তখন অশূরীয়দের সমস্ত সৈন্য, নেতা ও আধিকারিকদের হত্যা করলেন| অবশেষে, চরম লজ্জা নিয়ে অশূররাজ তাঁর রাজ্যে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন| এরপর, যখন তিনি তাঁর দেবতার মন্দিরে গেলেন, তাঁর নিজেরই কযেকজন পুত্র তরবারির সাহায্যে তাঁকে হত্যা করলো| 22 প্রভু এইভাবে হিষ্কিয় ও তাঁর লোকদের অশূররাজ সন্হেরীব ও অন্যান্যদের হাত থেকে রক্ষা করেন| প্রভু তাদের সব দিকেই শান্তি দিয়েছিলেন| 23 বহু ব্যক্তি জেরুশালেমে প্রভুর জন্য এবং যিহূদার রাজা হিষ্কিয়র জন্য মূল্যবান উপহার এনেছিলেন যাতে অন্য সমস্ত দেশ হিষ্কিয়কে সম্মান প্রদর্শন করে| 24 সেই সমযে, হিষ্কিয় খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং প্রায মৃত্যুমুখে পতিত হলেন| তিনি তখন প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলে প্রভু তাঁকে দর্শন দিয়ে একটি দৈব সংকেতের প্রতি লক্ষ্য রাখতে বলেন| 25 কিন্তু হিষ্কিয় এতো গর্বিত ছিলেন যে তিনি তখন ঈশ্বরের এই করুণার জন্য তাঁর প্রতি ধন্যবাদ পর্য়ন্ত জ্ঞাপন করেন নি| এতে ঈশ্বর হিষ্কিয় এবং যিহূদা ও জেরুশালেমের ওপর অত্যন্ত রুদ্ধ হলেন| 26 এই কারণে হিষ্কিয় ও এই সমস্ত লোকরা তাদের মনোভাব ও জীবনযাপনের ধারা পরিবর্তন করেছিলেন এবং গর্বিত হবার পরিবর্তে নম্রভাবে থাকতে শুরু করলেন| এর ফলে, হিষ্কিয়র জীবদ্দশায় প্রভুর রোধাগ্ন তাদের স্পর্শ করেনি| 27 হিষ্কিয় বহু ধনসম্পদ ও সম্মানের অধিকারী হয়েছিলেন| তিনি সোনা, রূপো, গযনাগাঁটি, মশলাপাতি অস্ত্রশস্ত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র রাখার জন্য নতুন নতুন জায়গা বানিয়েছিলেন| 28 লোকরা তাকে যে সমস্ত খাদ্যশস্য, দ্রাক্ষারস, তেল ইত্যাদি পাঠাতো সেসব রাখার জন্যও ভাঁড়ার ঘর ছিল| গবাদি পশু, ঘোড়া এদের থাকার জন্য বানানো হয়েছিল গোযাল ও আস্তাবল| 29 এছাড়াও হিষ্কিয় অনেক নতুন শহরের পত্তন করেছিলেন এবং মেষপাল ও অন্যান্য গবাদি পশুর অধিকারী হয়েছিলেন| ঈশ্বর হিষ্কিয়কে ধনবান করেছিলেন| 30 হিষ্কিয়ই জেরুশালেমের গীহোন ঝর্ণার উত্স মুখের স্রোত আটকে তার গতিপথ দায়ূদ নগরীর পশ্চিম প্রান্তে পরিবর্তিত করেছিলেন| তাঁর সমস্ত কাজেই হিষ্কিয় সফলতা লাভ করেন| 31 হিষ্কিয়র এই একটানা সফলতার কারণে বাবিলের নেতাদের তাঁর সাফল্যের গোপন কথা শিখতে পাঠানো হয়েছিল| হিষ্কিয়কে পরীক্ষা করার জন্য ঈশ্বর তাকে একা রেখে দিলেন, যাতে তিনি জানতে পারেন হিষ্কিয় সত্যি কতটা বিশ্বস্ত ছিল| 32 হিষ্কিয় আর যা কিছু করেছিলেন তিনি কিভাবে প্রভুকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছিলেন সে সবই আমোসের পুত্র যিশাইয়র ‘দর্শন পুস্তক’ এবং ‘যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ আছে| 33 হিষ্কিয়র মৃত্যুতে, লোকরা তাঁকে পাহাড়ের ওপর দাযূদের পূর্বপুরুষের মধ্যে সমাধিস্থ করল এবং তাঁর মৃত্যুর পর যিহূদার ও জেরুশালেমের সমস্ত লোকরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানায| হিষ্কিয়র মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র মনঃশি নতুন রাজা হলেন|
1 মাত্র বারো বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে রাজা মনঃশি 55 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 2 মনঃশি প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করেছিলেন| যে সমস্ত জাতির লোকদের প্রভু ইস্রায়েলীয়রা আসার আগে পাপাচরণের জন্য তাদের ভূখণ্ড থেকে উত্খাত করেছিলেন, মনঃশি তাদের অনুসৃত ভযানক ও জঘন্য পথে জীবনযাপন করেন| 3 মনঃশি আবার নতুন করে তাঁর পিতার ভেঙ্গে দেওয়া উচ্চস্থান বানানো ছাড়াও বাল দেবতার বেদী ও দেবী আশেরার খুঁটি বসিযেছিলেন| আকাশের নক্ষত্ররাজির সামনেও তিনি মাথা নত করেন ও তাদের পূজো করেন| 4 প্রভুর মন্দিরে, জেরুশালেমে যে মন্দিরে প্রভু আজীবন তাঁর উপস্থিতির চিহ্ন প্রকাশের বাসনা করেছিলেন, সেই মন্দিরে মনঃশি মূর্ত্তিদের বেদী স্থাপন করেছিলেন| 5 প্রভুর মন্দিরের দুটো উঠোনে মনঃশি আকাশের তারকারাজির জন্য বেদী স্থাপন করেছিলেন| 6 বিন্হিন্নোমের উপত্যকায, তিনি তাঁর নিজের সন্তানদের আগুনে উত্সর্গ করেছিলেন| তিনি ভবিষ্যত্ দ্রষ্টা, মোহক, য়ৌগিক ও মাযাএযিার মাধ্যমেও দুষ্ট আত্মা, প্রেতাত্মা ও যাদুকরদের সহায়তায তাঁর মনঃস্কামনা পূর্ণ করতে চেয়েছিলেন| এইরকম নানাভাবে প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করে তিনি প্রভুকে রুদ্ধ করে তুলেছিলেন| 7 তিনি মন্দিরে এক মূর্ত্তি স্থাপন করেছিলেন যেখানে প্রভু দায়ূদ ও তাঁর পুত্র শলোমনের কাছে ঘোষণা করেছিলেন, “আমি এই মন্দিরে এবং ইস্রায়েলের সমস্ত অঞ্চলগুলির মধ্যে থেকে যাকে মনোনীত করেছি সেই জেরুশালেমে আমার নাম চিরকাল রাখব| সেই মন্দিরে তিনি একটি মূর্ত্তি স্থাপন করলেন| 8 আমি মোশিকে যে বিধি ও নির্দেশগুলি দিয়েছিলাম শুধু যদি ইস্রায়েলীয়রা সেগুলি পালন করে তাহলে আমি তোমাদের পূর্বপুরুষকে যে জমি দিয়েছিলাম তা কখনো আবার ফিরিযে নেব না|” 9 কিন্তু যিহোশূয়র সময় প্রভু যে জাতিগুলিকে ধ্বংস করেছিলেন মনঃশি যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের, তার থেকেও বেশী পাপাচরণে প্রবৃত্ত করেছিলেন| 10 প্রভু মনঃশি ও তাঁর প্রজাদের সতর্ক করলেও তাঁরা তাঁর কথায় কর্ণপাত করলেন না| 11 তখন প্রভু অশূররাজের সৈন্যাধ্যক্ষদের দিয়ে মনঃশির রাজত্ব আক্রমণ করালেন| এই সৈন্যাধ্যক্ষরা মনঃশিকে বন্দী করে তাঁর হাতে পাযে বেড়ি পরিযে, শেকলে বেঁধে তাঁকে বাবিলে নিয়ে গেলেন| 12 তারপর, যখন তিনি মহা সঙ্কটে পড়লেন, তখন মনঃশি প্রভু তাঁর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন এবং গভীরভাবে তার পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের কাছে নিজেকে অবনত করলেন| 13 তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন এবং সাহায্য চাইলেন| ঈশ্বর তার প্রার্থনা শুনলেন এবং তার অনুরোধ রাখলেন এবং তিনি তাঁকে জেরুশালেমে, তাঁর রাজত্বে ফিরে গিয়ে তাঁর সিংহাসনে বসতে দিলেন| মনঃশি বুঝতে পারলেন যে প্রভুই প্রকৃত ঈশ্বর| 14 এ ঘটনার পর মনঃশি নগরীর বাইরে আরেকটি পাঁচিল তুললেন| এই দেওয়ালটি গীহোন ঝর্ণার পশ্চিম প্রান্তের কিদ্রোণ উপত্যকা থেকে ওফেল পর্বতের মত্সদ্বার পর্য়ন্ত বিস্তৃত হল| এবারের পাঁচিলগুলো খুব উঁচু করে বানানো হয়| এরপর মনঃশি যিহূদার সমস্ত দুর্গবেষ্টিত শহরে সেনাপতিসমূহ নিযোগ করেন| 15 তিনি সমস্ত মূর্ত্তি ও প্রতিকৃতিগুলি প্রভুর মন্দির থেকে সরিয়ে ফেলেন এবং মন্দিরের পর্বতের ওপর এবং জেরুশালেমে তাঁর বানানো বেদীগুলিও ভেঙে শহরের বাইরে ফেলে দিলেন| 16 তারপর তিনি প্রভুর জন্য বেদীটি উদ্ধার করলেন এবং মঙ্গল নৈবেদ্য ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন-সূচক নৈবেদ্য অর্পণ করলেন এবং যিহূদার সমস্ত লোকদের প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সেবায নিযোজিত হতে আদেশ দিলেন| 17 লোকরা উচ্চস্থলীতে বলি দিলেও তারা তা একমাত্র তাদের প্রভু ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই দিতেন| 18 মনঃশি আর যা কিছু করেছিলেন, ঈশ্বরের প্রতি তাঁর প্রার্থনা বা প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে যে সমস্ত ভাব্বাদী তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলেন সে সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের সরকারী নথিপত্র’তে লিপিবদ্ধ আছে| 19 মনঃশির প্রার্থনা এবং ঈশ্বরের তাতে সাড়া দেওয়া, তাঁর পাপ এবং বিশ্বাসহীনতা, যেখানে যেখানে তিনি উচ্চস্থান স্থাপন করেছিলেন সেই সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা, আশেরার খুঁটি সমূহ ও মূর্ত্তিসমূহ, নিজেকে নম্র করবার পূর্বে, এগুলি পরিপূর্ণভাবে “ভাব্বাদীদের ইতিহাস গ্রন্থে” লেখা আছে| 20 মনঃশির মৃত্যুর পর লোকরা তাকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করার পর তাঁর পুত্র আমোন নতুন রাজা হলেন| 21 আমোন 22 বছর বয়সে রাজা হয়ে মাত্র দু বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 22 আমোন প্রভুর প্রতি বহু পাপাচরণ করেন| তাঁর পিতার বানানো খোদাই করা মূর্ত্তির সামনে বলিদান করা ছাড়াও আমোন এই সমস্ত মূর্ত্তি পূজো করতেন| 23 তিনি তাঁর পিতা মনঃশির মতো দীনভাবে প্রভুর কাছে আত্মসমর্পণও করেন নি| বরঞ্চ তিনি উত্তরোত্তর আরো অপরাধ করতে থাকেন| 24 আমোনের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে রাজপ্রাসাদেই হত্যা করলো| 25 কিন্তু যিহূদার লোকরা এই সমস্ত চএান্তকারী ভৃত্যদের হত্যা করে আমোনের পুত্র য়োশিযকে সিংহাসনে বসালো|
1 যোশিয় মাত্র আট বছর বয়সে রাজা হয়ে 31 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 2 য়োশিয প্রভু বর্ণিত সত্ পথে জীবনযাপন করেছিলেন| তাঁর পূর্বপুরুষ দাযূদের মতোই তিনি বহু সত্কাজ করেন এবং এই পথ থেকে কখনও বিচ্যুত হননি| 3 তাঁর রাজত্বের আট বছরে, য়োশিয, যখন তিনি তখনও একজন বালক মাত্র ছিলেন, ঈশ্বরকে খুঁজতে শুরু করেন, যিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদ দ্বারা পূজিত| বারো বছর রাজত্ব করার পর, তিনি যিহূদা ও জেরুশালেম থেকে উঁচু স্থানগুলির উত্পাটন, আশেরার খুঁটিগুলি, মূর্ত্তিসমূহ ও প্রতিকৃতি নির্মূল করার অভিযান শুরু করেন| 4 লোকরা তাঁর আদেশে বালদেবের বেদী ও ধুপধূনো দেবার উঁচু বেদীগুলি ভেঙে ফেলেন| মূর্ত্তি ও প্রতিকৃতিগুলো ভেঙে গুঁড়ো করার পর তিনি সেই ধূলো বালদেবের মৃত উপাসকদের কবরে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন| 5 এবং য়োশিয বালের সেই সব যাজকদের হাড়গুলি এবং তাদের বেদীগুলি পুড়িয়ে ছাই করেন| 6 মনঃশি থেকে ইফ্রয়িম, শিমিযোন থেকে নপ্তালি- সমগ্র যিহূদা ও জেরুশালেম থেকে 7 য়োশিয এভাবে মূর্ত্তিপূজোর অবসান ঘটিযেছিলেন| এই সবকটি শহরে ও শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইস্রায়েলের সর্বত্র তিনি উচ্চস্থান ও আশেরার খুঁটি, দেবতাদের মূর্ত্তিসমূহ ভেঙে ধূলায মিশিয়ে দিয়ে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 8 যিহূদায় 18 বছর রাজত্ব করার পর এবং সেই ভূখণ্ডকে এবং মন্দিরকে শুদ্ধ করবার পর, য়োশিয অত্সলিযর পুত্র শাফন, নগরপাল মাসেয় ও সচিব য়োযাহষের পুত্র য়োযাহকে প্রভুর মন্দিরটি সারানোর আদেশ দিলেন| 9 আদেশ পালন করতে এরা সকলে প্রথমে মহাযাজক হিল্কিযর সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে লোকরা ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য যে অর্থ দিয়েছেন তা তুলে দিলেন| লেবীয় দ্বাররক্ষীগণ এই অর্থ মনঃশি, ইফ্রয়িম, যিহূদা, বিন্যামীন, জেরুশালেম ও ইস্রায়েলে যারা থেকে গিয়েছিল, তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন| তারপর তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 10 এরপর লেবীয়রা সেই অর্থ প্রভুর মন্দিরের কাজের তত্ত্বাবধায়কদের দিলেন| এমানুসারে তত্ত্বাবধায়করা সেই অর্থ প্রভুর মন্দিরে যেসব শ্রমিক কাজ করবে তাদের দিলেন| 11 ছুতোরকে কড়িবর্গার জন্য কাঠ কিনতে এবং পাথর কেনবার জন্য পাথর কাটুরেদের অর্থ দিলেন| তাঁরা এটা করলেন কারণ যিহূদার আগের রাজারা মন্দিরের ইমারতগুলিকে ধ্বংস হয়ে যেতে দিয়েছিলেন| 12 নিযুক্ত শ্রমিকরা লেবীয় মরারি পরিবারের লেবীয় য়হত্ ও ওবদিযর তত্ত্বাবধানে এবং কহাত্ পরিবারের সখরিয় ও মশুল্লমের অধীনে মন প্রাণ দিয়ে কাজ করলো| যে সমস্ত লেবীয়রা দক্ষ গাইযে, বাজিযে ছিলেন তাঁরা শ্রমিকদের এবং যারা বিভিন্ন রকমের কাজ করেছিলেন, তাদের তত্ত্বাবধান করলেন| কিছু লেবীয় করনিক, অধিকারিক ও রক্ষী হিসেবে কাজ করলেন| 13 14 সেই সময, যখন লেবীয়রা প্রভুর মন্দির থেকে অর্থ বের করছিলেন, যাজক হিল্কিয, মোশির মাধ্যমে প্রভু যে বিধিপুস্তকটি দিয়েছিলেন সেটিকে খুঁজে পেলেন| 15 উত্তেজিত হিল্কিয তখন সচিব শাফনকে ডেকে বললেন, “আমি প্রভুর গৃহ থেকে বিধি পুস্তক খুঁজে পেয়েছি|” এবং তিনি শাফনকে সেটি দেখতে দিলেন| 16 শাফন তা রাজা য়োশিযর কাছে নিয়ে এসে বললেন, “আপনার কর্মচারীরা আপনার সমস্ত নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে| 17 প্রভুর মন্দিরে যে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল তা দিয়ে ঠিকাদার আর মিস্ত্রিদের মজুরি দেওয়া হয়েছে|” 18 তারপর শাফন রাজা য়োশিযকে বললেন, “যাজক হিল্কিয আমায় একটা বই দিয়েছিলেন|” একথা বলে রাজার সামনে বিধি পুস্তকটি পাঠ করতে শুরু করলেন| 19 বিধি পুস্তকের কথাগুলি শুনে রাজা য়োশিয মানসিকভাবে বিপর্য়্য়স্ত হলেন এবং তাঁর জামাকাপড় ছিঁড়তে শুরু করলেন| 20 এবং তখন য়োশিয হিল্কিযকে, শাফনের পুত্র অহীকাম, মীখায়ের পুত্র অব্দোন, লেখক শাফন আর রাজার ভৃত্য অসাযকে নির্দেশ দিলেন, 21 “শিগ্গির গিয়ে প্রভুর কাছে খুঁজে পাওয়া বিধি পুস্তকে বর্ণিত বিষয সম্পর্কে রশ্ন করো| আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রভুর বিধি অনুসরণ করেন নি বলে প্রভু আমাদের ওপর খুবই রুদ্ধ হয়েছেন| তারা এই বইয়ে বর্ণিত সমস্ত বিধি ঠিকমতো পালন করেন নি|” 22 হিল্কিয ও রাজার সমস্ত ভৃত্যরা সকলে তখন রাজার বস্ত্রাগারের তত্ত্বাবধায়ক হস্রহের পৌত্র, তোখতের পুত্র, শল্লুমের স্ত্রী ভাব্বাদিনী হুল্দার কাছে জেরুশালেমে গিয়ে উপস্থিত হলেন| তখন হিল্কিয আর রাজভৃত্যরা হুল্দাকে বইটি সম্পর্কে জানাল| 23 হুল্দা তাদের বললেন: “রাজা য়োশিযকে গিয়ে বলো: প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর জানিয়েছেন, 24 ‘আমি এই অঞ্চলে ও এখানে বসবাসকারী লোকদের জীবনে দুর্য়োগ ঘনিয়ে তুলবো| যিহূদার রাজার সামনে যা পাঠ করা হয়েছে, বিধি পুস্তকে যেসব ভযানক ঘটনার কথা বর্ণিত হয়েছে আমি সেই সবই এখানে ঘটাবো| 25 কারণ লোকরা আমাকে পরিত্যাগ করেছে এবং অন্যান্য মূর্ত্তিসমূহের সামনে ধুপধূনো বালিয়েছে; তাদের যাবতীয় কুকাজ আমায় রুদ্ধ করে তুলেছে| তাই এই সমগ্র অঞ্চলের ওপর আমি আমার রোধাগ্ন বর্ষণ করবো যা কিছুতে নির্বাপিত হবে না|” 26 “যাই হোক, যিহূদার রাজা য়োশিয, যিনি তোমাদের প্রভুর কাছে খবর সংগ্রহের জন্য পাঠিয়েছেন, তাঁকে বলো যে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এ কথাও বলেন: 27 ‘য়োশিয, তুমি তোমার মন বদলেছ এবং আমার কাছে নিজেকে নম্র করেছ, তোমার পরনের পোশাক ছিঁড়েছ এবং আমার সামনে কেঁদেছ| তোমার হৃদয় কোমল, তাই আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি| 28 আমি তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের মধ্যে নিয়ে যাবো| তুমি শান্তিতেই মরতে পারবে| এই ভূখণ্ডে ও এখানকার লোকদের জীবনে আমি যে দুর্য়োগ ঘনিয়ে তুলবো তা তোমায় চোখে দেখে যেতে হবে না|”‘ হিল্কিয ও রাজকর্মচারীরা এসে রাজাকে এই খবর জানালেন| 29 রাজা য়োশিয তখন যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বললেন| 30 রাজা নিজে প্রভুর মন্দিরে গেলেন| যখন যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত লোক, যাজক ও লেবীয়রা, ধনী-দরিদ্র, উচ্চ-নীচ সবাই য়োশিযর কাছে এলো, তিনি তাদের প্রভুর মন্দিরে খুঁজে পাওয়া চুক্তি পুস্তকে লিখিত সবকিছু পাঠ করে শোনালেন| 31 এরপর রাজা তাঁর নিজের জায়গায় উঠে দাঁড়িয়ে প্রভুর সামনে তাঁর অনুগামী হইবার এবং সমস্ত অন্তঃকরণের ও সমস্ত প্রাণের সহিত তাঁহার আজ্ঞা বিধি এবং নিয়মসকল পালন করবেন বলে শপথ করলেন| 32 এরপর তিনি জেরুশালেম ও বিন্যামীনের সকলকে দিয়েও একই প্রতিশ্রুতি করালেন| জেরুশালেমের লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের সামনে করা শপথ রক্ষা করতে সম্মত হলেন| 33 ইস্রায়েলের লোকদের কাছে বিভিন্ন দেশের মূর্ত্তি ছিল| য়োশিয সেইসব ভযানক জঘন্য মূর্ত্তি ভেঙে ফেলে ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর সেবা করতে বাধ্য করালেন| যতদিন পর্য়ন্ত য়োশিয বেঁচে ছিলেন লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের প্রভু ঈশ্বরের সেবা করে চলেছিলেন|
1 রাজা য়োশিয জেরুশালেমে প্রভুর জন্য নিস্তারপর্ব উদয়াপন করেছিলেন| প্রথম মাসের 14 দিনে তারা নিস্তারপর্বের মেষটি বলিদান করে| 2 য়োশিয তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য যাজকদের বেছে নিয়েছিলেন এবং প্রভুর মন্দিরে কাজকর্ম করার সময় তিনি তাদের উত্সাহিত করেছিলেন| 3 যে সমস্ত লেবীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের শিক্ষাদান করতেন এবং প্রভুর সেবার জন্য য়াঁরা পৃথকভাবে সমর্পিত ছিলেন, য়োশিয তাঁদের বলেছিলেন, “পবিত্র সিন্দুকটি রাজা দাযূদের সন্তান শলোমনের বানানো মন্দিরে রেখে দাও| ওটা কাঁধে বয়ে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর তোমাদের আর কোনো প্রযোজন নেই| এবার মন দিয়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও ইস্রায়েলের লোকদের সেবা করো| 4 পরিবারগোষ্ঠী অনুযায়ীমন্দিরের সেবার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখো| রাজা দায়ূদ ও তাঁর সন্তান তোমাদের জন্য যে কর্তব্য বিধান করেছেন মন প্রাণ দিয়ে তা পালন করো| 5 যাও, লোকদের বিভিন্ন পরিবারের জন্য নির্দ্দিষ্ট মন্দিরের পবিত্র স্থানে লেবীয়গোষ্ঠীর সঙ্গে দাঁড়াও| 6 নিস্তারপর্বের মেষগুলো বলি দাও, প্রভুর জন্য নিজেদের শুদ্ধ ও পবিত্র করে তোলো| তোমাদের ভাইদের জন্য মেষগুলো প্রস্তুত করে রাখো| এসো, প্রভু মোশির মাধ্যমে আমাদের যা যা করতে আদেশ দিয়েছেন আমরা সেই সব করি|” 7 নিস্তারপর্বে বলি দেবার জন্য য়োশিয ইস্রায়েলের লোকদের নিজের গবাদি পশু থেকে 30,000 ছাগল ও মেষ ছাড়াও আরো 3,000 ষাঁড় দিয়েছিলেন| 8 য়োশিযর অধীনস্থ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও মুক্ত হস্তে নিস্তারপর্ব উদ্য়াপনের জন্য লেবীয় ও যাজকবর্গ লোকদের বিভিন্ন পশু ও জিনিসপত্র দান করেছিলেন| প্রভুর মন্দিরের প্রধান আধিকারিক হিল্কিয, সখরিয় এবং য়িহীযেল যাজকদের কাছে 2,600টি মেষ ও ছাগল এবং 300টি ষাঁড় দান করেছিলেন| 9 কনানিয, শময়িয়, নথনেল ও তাঁর ভাইরা, হশবিয, য়ীযীযেল, লেবীয় প্রধান, য়োষাবদের মত লোকরা নিস্তারপর্বে বলিদানের জন্য লেবীয়দের 500টি মেষ ও ছাগল এবং 500 টি ষাঁড় দান করেছিলেন| এই লোকরা ছিল লেবীয়দের নেতৃবৃন্দ| 10 রাজা যেমন আদেশ করেছিলেন সেই অনুযায়ীসমস্ত রকম প্রস্তুতি শেষ হলে যাজকরা তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়ালেন এবং লেবীয়রা তাদের নিজের নিজের দলগুলির সঙ্গে দাঁড়ালেন| 11 নিস্তারপর্বের মেষগুলো বলি দেওয়া হল| তারপর লেবীয়রা চামড়া ছাড়িযে যাজকদের হাতে বলি দেওয়া পশুর রক্ত তুলে দিলেন| যাজকরা সেই রক্ত বেদীর ওপর ছিটিয়ে দিলেন এবং 12 তারপর বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীর হাতে, মোশির বিধি পুস্তক অনুযাযী, প্রভুর প্রতি হোমবলির জন্য বলির মাংস তুলে দিলেন| 13 নির্দেশ অনুযাযী, লেবীয়রা আগুনের অাঁচে নিস্তারপর্বের মেষশাবকের মাংস ঝলসে নিলেন| তারপর দ্রুত লোকদের মধ্যে মাংস বিতরণ করা হল| 14 এসব কাজ শেষ হবার পর, লেবীয়রা তাদের নিজেদের ও হারোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের জন্য বরা? মাংসের ভাগ পেলেন| যেহেতু রাত্রি পর্য়ন্ত এই সমস্ত যাজক সকলেই হোমবলি এবং চর্বি নিবেদনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন, লেবীয়রা তাঁদের এবং যাজকদের জন্য মাংস তৈরী করলেন| 15 আসফের বংশের লেবীয় গায়করা এরপর রাজা দাযূদের নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন| এদের মধ্যে আসফ, হেমন রাজার ভাব্বাদী য়িদূথূন প্রমুখরা ছিলেন| দ্বাররক্ষীদের কাউকেই নিজেদের জায়গা ছেড়ে নড়তে হয়নি কারণ তাদের অন্যান্য লেবীয় ভাইরা সকলেই নিস্তারপর্বের জন্য যা যা করা প্রযোজন, সুষ্ঠভাবে করেছিলেন| 16 অথার্ত্ রাজা য়োশিয যেভাবে বলেছিলেন প্রভুর উপাসনার জন্য সব কিছু ঠিক সেইভাবে প্রস্তুত করা হল| এরপর নিস্তারপর্ব উদয়াপন করা হল এবং বেদীতে হোমবলি নিবেদন করা হল| 17 ইস্রায়েলের যে সমস্ত লোকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তারা সকলে সাতদিন ধরে নিস্তারপর্ব ও খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করলো| 18 সেই ভাব্বাদী শমূযেলের সমযের পর থেকে আর এভাবে ইস্রায়েলে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করা হয়নি| য়োশিয যেভাবে যাজকদের সঙ্গে, লেবীয়দের সঙ্গে এবং সমগ্র যিহূদা ও ইস্রায়েলে জেরুশালেমের লোকেদের সঙ্গে এই নিস্তারপর্ব উদয়াপন করলেন, ইস্রায়েলের কোনো রাজাই আগে তা পালন করেন নি| 19 রাজা য়োশিযর রাজত্বের 18 বছরের মাথায় এই নিস্তারপর্ব উদয়াপন করেছিলেন| 20 যোশিয় এই সবকিছু করার পরে মিশররাজ নখো ফরাত্ নদীর তীরবর্তী কর্কমীশ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এলেন, এবং য়োশিয তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করলেন| 21 নখো রাজা য়োশিযকে বার্তাবাহক মারফত্ জানালেন, “মহারাজ, আমি আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসি নি| এটি আদৌ আপনার কোনো সমস্যা নয়| আমি আমার শএুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছি কারণ ঈশ্বর আমার পক্ষে এবং তিনি আমাকে দ্রুত কাজ শেষ করতে বলেছেন| তাই আমাকে থামাবেন না, তাহলে ঈশ্বর আপনাকে ধ্বংস করবেন|” 22 কিন্তু য়োশিয এই সতর্কবাণীতে কর্ণপাত করলেন না এবং ছদ্মবেশে মগিদ্দোতে নখোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন| 23 যখন তীরন্দাজরা রাজা য়োশিযকে বিদ্ধ করল, তিনি তাঁর ভৃত্যদের বললেন, “আমাকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে চলো, আমি গুরুতর ভাবে জখম হয়েছি|” 24 ভৃত্যরা য়োশিযকে তাঁর রথ থেকে সরিয়ে তাঁরই আনা অন্য একটি রথে করে জেরুশালেমে নিয়ে এলো| সেখানেই তাঁর মৃত্যু হল| য়োশিযকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর মৃত্যুতে যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকরা গভীরভাবে শোকাচ্ছন্ন হলেন| 25 য়িরমিয য়োশিযর পারলৌকিক অনুষ্ঠানের জন্য কিছু গান লিখেছিলেন এবং গেয়েও ছিলেন, লোকরা এখনো সেই গান গেয়ে থাকে| রাজা য়োশিযর জন্য শোক প্রকাশ করে গান গাওযা ইস্রায়েলীয় জনজীবনের একটি অঙ্গে পরিণত হল| এই গানগুলি ‘পারলৌকিক অনুষ্ঠানের গান’ পুস্তকে লিপিবদ্ধ আছে| 26 রাজা য়োশিয তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘ইস্রাযেল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| এই গ্রন্থ থেকে প্রভুর প্রতি তাঁর ভক্তি ও নিষ্ঠা এবং তিনি কিভাবে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন সে কথাও জানা যায়| 27
1 যিহূদার লোকরা য়োশিযর পুত্র য়িহোযাহসকে জেরুশালেমে নতুন রাজা হিসেবে নির্বাচিত করলেন| 2 য়িহোযাহস 23 বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে মাত্র তিন মাস জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 3 তারপর মিশরের রাজা নখো এসে য়িহোযাহসকে বন্দী করেন| তিনি যিহূদার লোকেদের 3 3,4 টন রূপো ও 75 পাউণ্ড সোনা কর হিসেবে দিতে বাধ্য করেন| 4 নখো য়িহোযাহসের ভাই ইলীয়াকীমকে যিহূদা ও জেরুশালেমের নতুন রাজা হিসেবে নিযুক্ত করলেন, এবং তাঁর নতুন নামকরণ করলেন য়িহোযাকীম, তবে তিনি য়িহোযাহসকে তাঁর সঙ্গে মিশরে নিয়ে যান| 5 য়িহোযাকীম মাত্র 25 বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে এগারো বছর জেরুশালেমের রাজত্ব করেছিলেন| তিনি প্রভুর ইচ্ছা অনুসারে জীবনযাপনের পরিবর্তে তাঁর ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করেছিলেন| 6 বাবিলরাজ নবূখদ্রিত্সর যিহূদা আক্রমণ করে য়িহোযাকীমকে পেতলের শিকল দিয়ে বেঁধে বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গেলেন| 7 ফিরে যাবার সময় নবূখদ্নিত্সর প্রভুর মন্দির থেকে বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে গিয়ে বাবিলে তাঁর রাজপ্রাসাদে রেখে দিয়েছিলেন| 8 য়িহোযাকীম আর যা কিছু করেছিলেন তাঁর সমস্ত জঘন্য পাপাচরণের কথা ‘ইস্রাযেল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| য়িহোযাকীমের পর তাঁর জায়গায় তাঁর পুত্র য়িহোযাখীন নতুন রাজা হলেন| 9 য়িহোযাখীন 18 বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে মাত্র তিন মাস দশ দিন জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তিনিও প্রভুর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করেছিলেন| 10 বসন্তের সময়, রাজা নবূখদ্নিত্সর প্রভুর মন্দির থেকে অনেক দামী জিনিসপত্রের সঙ্গে য়িহোযাখীনকে বন্দী করে বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন| এরপর নবূখদ্নিত্সর য়িহোযাখীনের জনৈক আত্মীয, সিদিকিযকে যিহূদা ও জেরুশালেমের নতুন রাজা নিযুক্ত করলেন| 11 সিদিকিয মাত্র 21 বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে এগারো বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 12 সিদিকিযও প্রভুর ইচ্ছা অনুসারে জীবনযাপন না করে তাঁর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করেছিলেন| ভাব্বাদী য়িরমিয তাঁকে প্রভুর প্রেরিত সতর্কবাণী শোনালেও সিদিকিয তাতে কর্ণপাত করেন নি বা নম্র ও ধার্মিকভাবে জীবনযাপন করেন নি| 13 ইতিপূর্বে নবূখদ্নিত্সর সিদিকিযকে তাঁর অনুগত থাকতে বললেও সিদিকিয নবূখদ্নিত্সরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন| তিনি ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলেছিলেনযে তিনি নবূখদ্নিত্সরের অনুগত থাকবেন| কিন্তু শপথ করার পরেও তিনি তাঁর জীবনযাপনের রীতির কোনো পরিবর্তন করেন নি; এমনকি প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নির্দেশ মেনেও চলতে রাজী হননি| 14 উপরন্তু, যাজকগণের এবং লোকদের নেতৃবৃন্দ সকলেই প্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত ছিল এবং অন্যান্য জাতির মতোই পাপাচরণ করেছিল| তারা প্রভুর মন্দিরটিকেও অপবিত্র করেছিল যেটিকে তিনি জেরুশালেমে পবিত্র করেছিলেন| 15 তাদের পূর্বপুরুষদের প্রভু ঈশ্বর বারংবার ভাব্বাদীদের মাধ্যমে তাদের সতর্ক করেছিলেন কারণ তিনি এই মন্দির ও লোকেদের পরিণতির কথা ভেবে করুণা বোধ করেছিলেন| 16 কিন্তু তারা ঈশ্বরের বার্তাবাহকদের নিয়ে মজা করেছিল, তারা তাঁর বাক্য় ঘৃণা করেছিল এবং তাঁর ভাব্বাদীদের অপমান করেছিল যতক্ষণ না তাঁর ক্রোধ এত বেশী হয়ে গিয়েছিল যে তার কোন প্রতিকার ছিল না| 17 ঈশ্বর তখন বাবিলরাজকে দিয়ে যিহূদা ও জেরুশালেম আক্রমণ করালেন| বাবিলরাজ এসে সমস্ত তরুণদের এমনকি মন্দিরে উপাসনারত লোকদেরও হত্যা করলেন| নিষ্ঠুরভাবে, কোনো দয়ামাযা না দেখিয়ে তিনি স্ত্রী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, সুস্থ-অসুস্থ, যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত ব্যক্তিকে নির্বিচারে হত্যা করলেন| প্রভুই তাকে যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের শাস্তি দেবার অধিকার দিয়েছিলেন| 18 নবূখদ্রিত্সর প্রভুর মন্দির থেকে যাবতীয় জিনিসপত্র বাবিলে নিয়ে গেলেন| রাজকর্মচারীদের মূল্যবান জিনিসপত্রও তিনি নিয়ে যান| 19 তিনি ও তাঁর সেনাবাহিনী মিলে জেরুশালেমের প্রাকার গুঁড়িযে দিয়ে মন্দির, রাজপ্রাসাদও রাজকর্মচারীদের বাড়ী ঘরদোর সব কিছু পুড়িয়ে দিলেন| 20 যেসমস্ত ব্যক্তিরা বেঁচে ছিল নবূখদ্রিত্সর তাদের সবাইকে এীতদাস হিসেবে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন| পারস্যরাজ বাবিল অধিকার করা পর্য়ন্ত এই সমস্ত ব্যক্তিরা বাবিলেই ছিল| 21 এইভাবে প্রভু ভাব্বাদী য়িরমিযর মুখ দিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের উদ্দেশ্যে যা যা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন সে সবই মিলে গেল| প্রভু য়িরমিযর মারফত্ ভবিষ্যদ্বাণী করেন, “বিশ্রামদিনে বিশ্রাম না নিয়ে লোকেরা যে পাপাচরণ করেছে তা শোধন করতে এই ভূখণ্ড এভাবে পতিত থাকবে|” এইভাবে, দেশটি 70 বছর ধরে বিশ্রাম পেয়েছিল| 22 পারস্যরাজ কোরসের রাজত্বের প্রথম বছরে, প্রভু কোরসকে দিয়ে তাঁর রাজ্যের সর্বত্র একটি বিশেষ ঘোষণা করালেন এবং সেটি লিখিত হল যাতে ভাব্বাদী য়িরমিযর মাধ্যমে দেওয়া প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণীটি সত্যি হয়| কোরস তাঁর রাজত্বের সর্বত্র বার্তাবাহক পাঠিয়ে ঘোষণা করালেন: 23 “পারস্যের রাজা কোরস জানিয়েছেন যে স্বর্গের প্রভু ঈশ্বর আমাকে পৃথিবীর অধীশ্বর করেছেন| তিনি আমাকে জেরুশালেমে তাঁর জন্য একটি মন্দির তৈরী করবার দায়িত্ব দিয়েছেন| এখন তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের সেবকরা সকলেই স্বাধীন এবং জেরুশালেমে যেতে পারো| প্রার্থনা করি প্রভু তোমাদের সকলের সহায় হোন|”
1 পারস্যের রাজা কোরসের রাজত্বের প্রথম বছরেপ্রভু একটি ঘোষণা করবার জন্য তাঁকে উত্সাহিত করলেন| কোরস সেই ঘোষণাটি লিখিযে নিলেন এবং তাঁর রাজ্যের সব জায়গায সেটি পড়াবার ব্যবস্থা করলেন| যিরমিয়র মুখ দিয়ে বলা প্রভুর এই বার্তাটি যাতে প্রচার হয় তার জন্য এই ব্যবস্থা হল| ঘোষণাটি এইরূপ: 2 “পারস্যের রাজা কোরসের কাছ থেকে:স্বর্গের প্রভু আমায় পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য উপহার দিয়েছেন| যিহূদা দেশের জেরুশালেমে তাঁর জন্য একটি মন্দির নির্মাণের নিমিত্ত তিনি আমাকে নিযুক্ত করেছেন| 3 যদি তোমাদের মধ্যে তাঁর কোন লোক বাস করে তবে তারা য়েন তাদের যিহূদা দেশের জেরুশালেম শহরে গিয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভুর জন্য একটি মন্দির নির্মাণ করে য়েটি জেরুশালেমে আছে| প্রভু তাদের আশীর্বাদ করুন| 4 সমস্ত জায়গায যেখানে বেঁচে যাওয়া ইস্রায়েলীযরা বাস করে তাদের সেখানকার অধিবাসীদের সমর্থন অবশ্যই পাওয়া দরকার| জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের জন্য প্রত্যেককে তাদের সোনা, রূপো, গবাদি পশু ও অন্যান্য রয়োজনীয় সামগ্রী দান করতে হবে|” 5 তখন যিহূদা ও বিন্যামীন উপজাতির পরিবারের অধিনায়করা প্রভুর মন্দির নির্মাণের জন্য জেরুশালেমে য়েতে প্রস্তুত হল| অন্যান্য লোকরাও, যারা ঈশ্বরের দ্বারা উত্সাহিত হয়েছিল, তারাও তাদের সঙ্গে য়োগদান করতে প্রস্তুত হল| 6 এই কাজের জন্য তাদের প্রতিবেশীরা সকলেই মুক্তহস্তে তাদের সোনা, রূপো, গবাদি পশুসহ আরো অন্যান্য বহুমূল্য উপহার দান করল| 7 য়ে সমস্ত জিনিষ মূলতঃ জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরে ছিল সেগুলিও পারস্য-রাজ কোরস সেখান থেকে বের করে আনলেন| এই জিনিষগুলি রাজা নবূখদ্নিত্সর বের করে নিয়ে এসে তাঁর মন্দিরে মূর্ত্তিসমূহের মধ্যে রেখেছিলেন| রাজা কোরস তাঁর কোষাধ্যক্ষ মিত্রদাতের হাত দিয়ে সেই সমস্ত সামগ্রী বের করে ইহুদী নেতা শেশ্বসরের হাতে প্রভুর মন্দিরের জন্য তুলে দিলেন| 8 9 মিত্রদাত য়ে সমস্ত সামগ্রী এনেছিলেন তার মধ্যে ছিল:সোনার থালা 30রূপোর থালা 1,000ছুরি এবং চাটুসমূহ 29 10 সোনার বাটি 30ঠিক সোনার বাটির মত রূপোর বাটি 410এবং অন্যান্য পাত্র 1,000 11 সেখানে সব সমেত 5,400 টি সোনার এবং রূপোর জিনিষ ছিল| য়ে সমস্ত বন্দী বাবিল ছেড়ে জেরুশালেমে ফিরে যাচ্ছিল তাদের সঙ্গে শেশ্বসর এই সমস্ত জিনিষ এনেছিলেন|
1 বাবিলের রাজা নবূখদ্নিত্সর যাদের বন্দী করেছিলেন, তারা জেরুশালেম এবং যিহূদায় য়ে যার নিজের নগরে ফিরে গেল| 2 এরা সকলে সরুব্বাবিল, য়েশূয, নহিমিয়, সরায়, রিযেলায়, মর্দখয়, বিল্শন, মিস্পর, বিগ্রয়, রহূম ও বানাদের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করল| যারা ইস্রায়েলে ফিরেছিল তাদের তালিকাটি নিম্নরূপ: 3 পরোশের উত্তরপুরুষ 2,172 4 শফটিয়ের উত্তরপুরুষ 372 5 আরহের উত্তরপুরুষ 775 6 য়েশূয় এবং য়োয়াব পরিবারের পহত্-মোয়াবের উত্তরপুরুষ 2,812 7 এলমের উত্তরপুরুষ 1,254 8 সত্তূর উত্তরপুরুষ 945 9 সক্কয়ের উত্তরপুরুষ 760 10 বানির উত্তরপুরুষ 642 11 ব্বেয়ের উত্তরপুরুষ 623 12 অস্গদের উত্তরপুরুষ 1,222 13 অদোনীকামের উত্তরপুরুষ 666 14 বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষ 2,056 15 আদীনের উত্তরপুরুষ 454 16 যিহিষ্কিয়ের বংশজাত আটেরের উত্তরপুরুষ 98 17 বেত্সয়ের উত্তরপুরুষ 323 18 য়োরাহের উত্তরপুরুষ 112 19 হশুমের উত্তরপুরুষ 223 20 গিব্বরের উত্তরপুরুষ 95 21 বৈত্লেহেম শহরের 123 22 নটোফা শহরের 56 23 অনাথোত শহরের 128 24 অস্মাবত শহরের 42 25 কিরিয়ত্-আরীম, কফীরা ও বেরোত শহরের 743 26 রামা ও গেবা শহরের 621 27 মিক্মস শহরের 122 28 বৈথেল ও অয় শহরের 223 29 নবো শহরের 52 30 মগ্বীশ শহরের 156 31 এলম নামে একটি শহরের 1,254 32 হারীম শহরের 320 33 লোদ, হাদীদ ও ওনো শহরের 725 34 য়িরিহো শহরের 345 35 সনায়া শহরের 3,630 36 যাজকদের মধ্যে ছিলেন:য়েশূয় পরিবারের যিদয়িয়ের উত্তরপুরুষ 973 37 ইম্মেরের উত্তরপুরুষ 1,052 38 পশ্হূরের উত্তরপুরুষ 1,247 39 হারীমের উত্তরপুরুষ 1,017 40 লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে যারা ছিল তারা হল:হোদবিয়ের পরিবারের মাধ্যমে য়েশূয় ও কদ্মীয়েলের উত্তরপুরুষ 74 41 আসফের গায়কবর্গের মধ্যে 128 42 মন্দিরের দ্বারপালের উত্তরপুরুষের মধ্যেশল্লূম, আটের, টলমোন, অক্কূব,হটীটা এবং শোবয়ের উত্তরপুরুষের 139 43 মন্দিরের সেবা-দাসদের উত্তরপুরুষের মধ্যে ছিলেন:সীহ, হসূফা ও টব্বায়োতের উত্তরপুরুষরা, 44 কেরোস, সীয ও পাদোনের সন্তানরা, 45 লবানা, হগাব ও অক্কূবের সন্তানরা, 46 হাগব, শল্ময ও হাননের সন্তানরা, 47 গিদ্দেল, গহর ও রায়ার সন্তানরা, 48 রত্সীন, নকোদর ও গসমের সন্তানরা, 49 উষ, পাসেহ ও বেষযের সন্তানরা, 50 অস্না, মিযূনীম ও নফূষীমের সন্তানরা, 51 বক্বূক, হকূফার ও হর্হূরের সন্তানরা, 52 বসলূত, মহীদা ও হর্শার সন্তানরা, 53 বর্কোস, সীষরা ও তেমহের সন্তানরা, 54 নত্সীহ ও হটীফার সন্তানরা| 55 শলোমনের ভৃত্যদের উত্তরপুরুষরা ছিল:সোটয়, হস্সোফেরত ও পরূদা | 56 যালা, দর্কোন ও গিদ্দেল, 57 শফটিয, হটীল, পোখেরত্-হত্সবাযীমেরএবং আমীর সন্তানগণ| 58 মন্দিরের সেবা-দাসরা এবংশলোমনের ভৃত্যদের উত্তরপুরুষরা 392 59 তেল্-মেলহ, তেল হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মের নগর থেকে জেরুশালেমে এসেছিল নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা, কিন্তু তারা ইস্রায়েলের পরিবারবর্গের পরিবার ছিল কিনা তা প্রমাণ করতে পারল না| 60 দলায়, টোবিয় ও নকোদের উত্তরপুরুষ 652 61 হবায়, হক্কোস ও বর্সিল্লয় যাজক পরিবারের উত্তরপুরুষ| (যদি কোন পুরুষ গিলিয়দের বর্সিল্লয় কন্যাকে বিয়ে করত, তাহলে সেই পুরুষটিকে বলা হত বর্সিল্লয়ের উত্তরপুরুষ|) 62 এরা সকলেই তাদের পরিবারের ইতিহাস স্থাপন করবার চেষ্টা করল| 63 য়েহেতু যাজক তালিকায় এদের পূর্বপুরুষদের নামোল্লেখ ছিল না, সেহেতু তাদের পূর্বপুরুষরা সত্যিই যাজক ছিলেন কিনা তা তারা প্রমাণ করতে পারল না| তাই তারাও যাজক হিসেবে কাজ করবার অনুমতি পেল না| রাজ্যপাল তাদের আদেশ দিলেন, যতক্ষণ পর্য়ন্ত না এক জন যাজক ঊরীম এবং তুম্মীম দ্বারা ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত না জানাতে পারে ততক্ষণ তারা য়েন পবিত্র খাদ্য গ্রহণ না করে| 64 যারা ফিরে এল তাদের মধ্যে 42,360 জন ব্যক্তি ছিল| এছাড়াও তাদের সঙ্গে ছিল 7,337 জন পুরুষ ও নারী ভৃত্য, 200 জন গায়ক ও গাযিকা| 65 66 তাদের 736টি ঘোড়া, 245টি খচচর, 435টি উট ও 6,720টি গাধা ছিল| 67 68 তারা যখন জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরে এসে পৌঁছল তখন পরিবারের কর্তারা, প্রভুর মন্দির নির্মাণের জন্য উপহারগুলি দান করলেন| 69 এই উপহারের মধ্যে ছিল 1,100 পাউণ্ড সোনা, 3 টন রূপো ও যাজকদের পরিবারের জন্য 100টি অঙ্গরক্ষক বস্ত্র| আগে যেখানে প্রভুর মন্দিরটি ছিল সেই খানেই তারা মন্দিরটি নির্মাণ করবে| 70 এই কাজের জন্য যাজকগণ, লেবীয় ও অন্যান্য ব্যক্তিরা জেরুশালেমের কাছাকাছি অঞ্চলে বসতি স্থাপন করল| এই দলের মধ্যে মন্দিরের দ্বাররক্ষী, গায়কবর্গ, ও সেবাদাসরা ছিল| ইস্রায়েলের অন্যান্য ব্যক্তিরা তাদের নিজ নিজ শহরে বাসা বাঁধলো|
1 যে সমস্ত ইস্রায়েলীয় ফিরে এসেছিল এবং নিজেদের শহরে বসতি স্থাপন করেছিল, তারা সবাই সপ্তম মাসে এক জাতি হিসেবে জেরুশালেমে একত্রিত হল| 2 তারপর য়োষাদকের পাত্র য়েশূয় এবং তাঁর সঙ্গের যাজকগণ, শলটীয়েলের পাত্র সরুব্বাবিল ও তাঁর সঙ্গের লোকরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য একটি বেদী নির্মাণ করলেন| ঈশ্বরের দাস মোশি য়ে ভাবে বর্ণনা করেছিলেন, বেদীটি সে ভাবেই বানানো হল| 3 যদিও তারা, কাছাকাছি বাস করত এমন অন্য জাতির লোকদের ভয় করত, তবুও তারা য়জ্ঞবেদীটি পুরানো ভিত্তির ওপরই তৈরী করেছিল এবং তার ওপর নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছিল| তারা প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় প্রার্থনা করত| 4 এরপর তারা মোশির আদেশ অনাসারে কুটিরপর্ব উত্সব পালন করল| তারা উত্সবের প্রতিটি দিন ঠিং সংখ্যক হোমবলি উত্সর্গ করল| 5 তারপর তারা প্রতিদিন নিত্য হোমবলি উত্সর্গ করা শুরু করল, এবং অমাবস্যার উত্সবের জন্য, অন্যান্য সমস্ত ছুটির দিনের জন্য এবং ঈশ্বরের আদেশকৃত উত্সবের দিনগুলোর জন্য উত্সর্গ করতে লাগল| লোকরা প্রভুকে বিশেষ উপহারগুলোর মধ্যে য়ে কোন উপহার দিতে শুরু করল যা তারা প্রভুকে দিতে চাইত| 6 মন্দির পুননির্মাণ শুরু না হওয়া সত্ত্বেও সপ্তম মাসের প্রথম দিন থেকে ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে উপহার উত্সর্গ করতে শুরু করল| 7 তারপর তারা পাথর কাটুরে ও ছুতোরদের পয়সা দিল| এবং তারা সোরীয় ও সীদোনীয়দের জাহাজে করে লিবানোন থেকে সমুদ্র তীরবর্ত্তী যাফো নগর পর্য়ন্ত এরস কাঠ আনবার জন্য খাদ্য, দ্রাক্ষারস ও জলপাই তেল দিল| পারস্যের রাজা কোরস তাদের এই সব করবার অনুমতি দিয়েছিলেন| 8 জেরুশালেমে ফিরে আসার পর দ্বিতীয় বছরের দ্বিতীয় মাসে শলটীয়েলের পাত্র সরুব্বাবিল, য়োষাদকের পাত্র য়েশূয ও তাঁদের ভাইরা, যাজকগণ, লেবীয়গণ ও অন্যান্য ব্যক্তিরা য়াঁরা বন্দীদশা থেকে জেরুশালেমে ফিরে এসেছিলেন তাঁরা মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করলেন| তাঁরা 20 বছর এবং তার চেযে বেশী বযস্ক লেবীয়দের মন্দির নির্মাণের তত্ত্বাবধানের জন্য বেছে নিলেন| 9 য়াঁরা মন্দির নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধান করেছিলেন তাঁরা হলেন: য়েশূয় ও তাঁর পাত্ররা, কদ্মীযেল ও তাঁর পাত্ররা (যিহূদার উত্তরপুরুষ), লেবীয় হেনাদদের পাত্রগণ ও তাঁদের ভাইরা| 10 যখন সহপতিরা প্রভুর মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করলেন, তখন যাজকরা পূর্নপরিচ্ছদ পরে শিঙা বাজালেন: আসফের সন্তানরা তাঁদের খোল কর্তাল নিলেন এবং ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের আদেশানুসারে প্রভুকে প্রশংসা করবার জন্য তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়ালেন| 11 এক সঙ্গে প্রভুর প্রশংসা করতে করতে এবং প্রভুকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁরা গাইলেন, “প্রভু ভালো! তাঁর প্রকৃত প্রেম চির কাল অব্যাহত থাকে|” তারপর সমস্ত লোক একটি বিরাট চিত্কার করে হর্ষধ্বনি করে উঠল এবং তারা প্রভুর প্রশংসা করল কারণ প্রভুর মন্দিরের ভিত্তিস্থাপন হয়ে গেল| 12 তখন আগেকার সুন্দর পুরানো মন্দিরের কথা স্মরণ করে বহু বয়স্ক লোক, যাজক অথবা লেবীয়দের গাল বেযে চোখের জল গড়িযে পড়ল| অন্যরা যখন আনন্দ করছিল ও কোলাহল করছিল তখন তাঁরা কাঁদছিল| 13 সেই আনন্দ ও কোলাহলের ধ্বনি বহুদূর থেকেও শোনা যাচ্ছিল| কিন্তু এত জোরে শব্দ হচ্ছিল য়ে যারা দূর থেকে তা শুনছিল তারা বুঝতে পারছিল না সেটা আনন্দের শব্দ না কান্নার|
1 অন্য দেশের বহু লোক যাঁরা ঐ অঞ্চলে বাস করতেন তাঁরা যিহূদা ও বিন্যামীনের লোকদের প্রতি বিরূপ মনোভাবাপন্ন ছিলেন| তাঁরা শুনতে পেলেন য়ে যারা বন্দীদশা থেকে ঐ অঞ্চলে ফিরে এসেছে তারা প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য একটি মন্দির নির্মাণ করছে| তাই তাঁরা সরুব্বাবিল ও পিতৃকুলপতিদের কাছে এলেন এবং বললেন, “নির্মাণের কাজে আমাদের য়োগ দিতে দাও| আমরা তোমাদেরই মত| যখন থেকে অশূর রাজা এসর-হদ্দোন আমাদের এখানে নিয়ে এসেছেন তখন থেকে আমরা তোমাদের প্রভুকে হোমবলি উত্সর্গ করছি|” 2 3 সরুব্বাবিল, য়েশূয় ও ইস্রায়েলের অন্যান্য পিতৃকুলপতিরা তাঁদের বললেন, “না, তোমরা আমাদের সঙ্গে মন্দির নির্মাণ করতে পার না| রাজা কোরসের আদেশ অনুযায়ীইস্রায়েলের প্রভুর মন্দির নির্মাণের কাজ একমাত্র আমরাই সম্পন্ন করতে পারি|” 4 একথা শুনে এই সব ব্যক্তিরা রুদ্ধ হলেন| তাঁরা যিহূদার লোকদের নিরুত্সাহ করবার চেষ্টা করলেন এবং তাদের নির্মাণের কাজ বন্ধ করবার চেষ্টা করলেন| 5 ওইসব শএুরা মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ করবার নিমিত্ত নানা রকম সমস্যা সৃষ্টির জন্য সরকারী কর্মচারীদেরও ভাড়া করে এনেছিলেন| পারস্য-রাজ কোরসের রাজত্বকাল থেকে শুরু করে পারস্য-রাজ দারিয়াবসের রাজত্ব প্রাপ্তি পর্য়ন্ত এই প্রতিকুল অবস্থা চলেছিল| 6 এমনকি ইহুদীদের নিবৃত্ত করার জন্য তারা রাজা কোরসকে বেশ কিছু অভিয়োগাত্মক চিঠিও লিখেছিলেন| অহশ্বেরশর য়ে বছরে পারস্যের রাজা হলেন সেই বছরে শএুরা তাঁকেও একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন| 7 অর্তক্ষস্ত যখন পারস্যের রাজা হলেন, তখন এই সব ব্যক্তিরা ইহুদীদের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে তাঁকে আরেকটি চিঠি লিখেছিলেন| বিশ্ালম, মিত্রদাত্, টাবেল ও তাঁর অন্যান্য সঙ্গীরা অরামীয় ভাষায় এই চিঠি রচনা করেছিলেন| 8 তারপর সেনাপতি রহূম এবং সচিব শিম্শয় রাজা অর্তক্ষস্তের কাছে জেরুশালেমের লোকদের বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছিলেন| তাঁরা এইরূপ লিখেছিলেন: 9 “সেনাপতি রহূম এবং সচিব শিম্শয় এবং টর্পলীয়, পারস্য, অর্কবীয় ও বাবিলীয় গণের বিচারকবর্গ, গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারী এবং এলমীয লোকদের শূশন্খীয লোকদের কাছ থেকে 10 এবং অন্যান্য লোকদের যাদের মহামহিম অস্নপপর শমরিয়া নগরে এবং ফরাত্ নদীর পশ্চিম পারের দেশের অন্যান্য জায়গায এনেছিলেন তাদের কাছ থেকে| 11 রাজা অর্তক্ষস্তের য়ে চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল এটি তারই একটি অনুলিপি:“আপনার ভৃত্য ফরাত্ নদীর পশ্চিম পারের প্রজাবর্গের কাছ থেকে-হে রাজা অর্তক্ষস্ত, আমরা আপনার কাছে বিনীত নিবেদন করতে চাই য়ে, য়ে সব ইহুদীদের আপনি এখানে ফেরত্ পাঠিয়েছিলেন তারা শহর পুনর্নিমাণ করতে চেষ্টা করছে| জেরুশালেমের বাসিন্দারা বরাবর অন্যান্য রাজাদের প্রতি বিদ্রোহ করে এসেছে| বর্তমানে ইহুদীরা শহরের ভিত নির্মাণ করছে ও দেওয়াল গাঁথছে| 12 13 হে মান্যবর, আপনার জ্ঞাতার্থে জানাই য়ে শহরের চারপাশে দেওয়াল বানানোর কাজ শেষ হলেই কিন্তু জেরুশালেমের বাসিন্দারা আপনাকে কর প্রদান করা বন্ধ করবে এবং এতে রাজকোষের আর্থিক ক্ষতি হবে| 14 আমরা রাজার প্রতি অনুগত থাকতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আমরা এরকম একটি ঘটনা ঘটতে দিতে চাই না এবং আমরা এও মনে করি য়ে এসব কথা আপনাকে জানানো আমাদের কর্ত্তব্য| 15 রাজা অর্তক্ষস্ত, আপনাকে আমরা আপনার পূর্বে য়ে সব রাজাগন রাজত্ব করেছেন তাঁদের নথিপত্র পড়ে দেখতে পরামর্শ দিচ্ছি| ঐ নথিপত্রে দেখবেন জেরুশালেম সব সময়ই বহু রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে| জেরুশালেমের বাসিন্দারা রাজা ও শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বহু অসুবিধার সৃষ্টি করেছিল| ঐ সব কারণবশতঃই এই শহরটি ধ্বংস হয়| 16 হে রাজাধিরাজ, আমরা আপনাকে সাবধান করে দিতে চাই, জেরুশালেমের চারপাশের দেওয়াল যদি আবার গাঁথা হয় তাহলে আপনি ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চল থেকে আপনার কর্তৃত্ব হারাতে বসবেন| 17 রাজা অর্তক্ষস্ত এদের চিঠির উত্তরে লিখলেন: 18 আমার শুভেচ্ছা নেবেন| আপনাদের পাঠানো চিঠিটি আমাকে অনুবাদ করে পড়ে শোনানো হয়েছে| 19 আমি আপনাদের পরামর্শ অনুযায়ীভূতপূর্ব রাজাদের দলিল ও অন্যান্য তথ্যাদি অনুসন্ধানের নির্দেশ দিই| 20 সেই সব লেখা পড়া হয় ও জানা যায় য়ে দীর্ঘকাল থেকেই জেরুশালেম শহরের বাসিন্দারা শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এসেছে| বিদ্রোহ এবং বিরোধিতার সৃষ্টি করা এই শহরের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা| জেরুশালেম ও ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলে বহু ক্ষমতাবান রাজগণ রাজত্ব করে এসেছেন, এবং তাঁরা এই সমুদয অঞ্চল থেকে করও পেয়েছেন| 21 এখন, আমি পুনরায় নির্দেশ না দেওয়া পর্য়ন্ত আপনারা ইহুদীদের জেরুশালেম শহরের চারপাশে দেওয়াল তোলার কাজ বন্ধ করতে আদেশ করুন| 22 দেখবেন, এই ব্যাপারে য়েন কোন গাফিলতি না হয়| আমরা জেরুশালেম শহরকে নতুন করে বানাতে দিতে পারি না, কারণ আমরা হয়ত এই শহর থেকে কর পাবো না| 23 রাজা অর্তক্ষস্তের চিঠিটির একটি অনুলিপি রহূম, শিম্শয় এবং তাঁদের সঙ্গের লোকদের কাছে পড়ে শোনানো হল| তারপর ঐ ব্যক্তিরা সোজা জেরুশালেমে ইহুদীদের কাছে গেলেন এবং ইহুদীদের নির্মাণ কার্য়্য় বন্ধ করতে বাধ্য করলেন| 24 ফলস্বরূপ, জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ হল| পারস্যের রাজা হিসেবে দারিয়াবসের রাজত্বের দ্বিতীয় বছর পর্য়ন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল|
1 সেই সময় হগয় ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয় ভাব্বাদীদ্বয প্রভুর নামে ভবিষ্যত্বাণী করে জেরুশালেম ও যিহূদার লোকদের উদ্দীপিত করতে লাগলেন| 2 তখন শলটীয়েলের সন্তান সরুব্বাবিল ও য়োষাদকের পুত্র য়েশূয় আবার জেরুশালেমে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করলেন| ঈশ্বরের সমস্ত ভাব্বাদীরা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এবং তাঁরা এই কাজ সমর্থন করছিলেন| 3 তখন ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের শাসক তত্তনয়, শথরবোষণয় ও তাঁদের অনুচরবর্গ, যাঁরা মন্দির পুননির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন তাঁদের কাছে গিয়ে জানতে চাইলেন, “কার সম্মতিতে তোমরা আবার নতুন করে মন্দির বানাতে শুরু করেছ?” 4 সরুব্বাবিলের কাছেও যারা এই মন্দির পুননির্মাণের কাজে জড়িত ছিলেন তাঁদের নাম জানতে চাইলেন| 5 কিন্তু ঈশ্বর বয়ং ইহুদী নেতাদের প্রতি লক্ষ্য রাখছিলেন| রাজা দারিয়াবসকে একটা খবর না পাঠানো পর্য়ন্ত তাদের কাজ বন্ধ করবার কোন প্রয়োজন ছিল না| রাজার কাছ থেকে উত্তর না আসা পর্য়ন্ত তারা কাজ চালিয়ে গেলেন| 6 ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের শাসক তত্তনয়, শথর বোষণয় ও তাঁদের সঙ্গে প্রধান ব্যক্তিরা 7 রাজা দারিয়াবসকে একটি চিঠি পাঠালেন| 8 হে রাজা, আমরা যিহূদা অঞ্চলে গিয়েছিলাম এবং মহান ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেছি এবং দেখলাম য়ে, ইহুদীরা বড় বড় পাথর ও কাঠের গুঁড়ি দিয়ে মন্দিরটি বানিয়ে চলেছে| আমাদের বিশ্বাস এই গতিতে কাজ হলে মন্দির নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে| 9 আমরা তাদের দলপতিদের কাছে, আপনাকে পাঠানোর জন্য ব্যক্তিদের নামের তালিকা চেয়েছিলাম এবং প্রশ্ন করেছিলাম| আমরা এটাও জানতে চেযেছিলাম য়ে কার অনুমতিতে তারা মন্দিরটি পুননির্মাণ করছে| 10 11 উত্তরে তারা বলল:“আমরা স্বর্গ ও মর্ত্যের ঈশ্বরের দাস| আমরা মন্দিরটি পুনর্নিমাণ করছি য়েটি বহু বছর আগে ইস্রায়েলের এক মহান রাজা বানিয়েছিলেন| 12 আমাদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরকে রুষ্ট করেছিল তাই ঈশ্বর নবূখদ্নিত্সরকে বাবিলের রাজা করে পাঠিয়েছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষকে শাসন করবার জন্য| নবূখদ্নিত্সর এই মন্দিরটি ধ্বংস করে আমাদের পূর্বপুরুষদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে যান| 13 বাবিলে কোরসের প্রথম বছরের রাজত্বকালে তিনি এই মন্দির পুননির্মাণের জন্য আদেশ দেন| 14 অতঃপর রাজা কোরস সমস্ত সোনার ও রূপোর জিনিষ, য়েগুলো জেরুশালেমের মন্দির থেকে নবূখদ্নিত্সর দ্বারা লুণ্ঠিত হয়েছিল এবং তাঁর মূর্ত্তির মন্দিরে রাখা হয়েছিল, সেগুলো শেশ্বসরের হাত দিয়ে ফেরত্ পাঠান| 15 রাজা কোরস, শেশ্বসরকে রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করলেন এবং তাঁকে বললেন, “এই সব সোনা এবং রূপোর জিনিষ নিয়ে যাও এবং জেরুশালেমের মন্দিরে পুনরায় রেখে দাও এবং মন্দিরটি পূর্বে যেখানে ছিল ঠিক সেখানেই মন্দির পুননির্মাণ কর|” 16 শেশ্বসর তখন জেরুশালেমে এসে এই নতুন মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন; সেদিন থেকে আমরা এই ঈশ্বরের মন্দির পুননির্মাণের কাজ করে আসছি, কিন্তু আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি| 17 এখন রাজা যদি ইচ্ছা করেন, দয়া করে পুরানো নথিপত্র দেখতে পারেন, এটা প্রমাণ করবার জন্য য়ে, রাজা কোরস সত্যি সত্যিই জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির পুননির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না| অতঃপর তিনি যদি এ বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা আমাদের একটি চিঠিতে জানান তাহলে আমরা বিশেষ বাধিত হব|
1 তখন রাজা দারিয়াবস তাদের কথার সত্যতা যাচাইযের জন্য প্রাচীন রাজাদের নথিপত্র খুঁজে দেখার নির্দেশ দিলেন| এই সমস্ত নথিপত্র বাবিলে কোষাগারে রক্ষিত হত| 2 ভালভাবে অনুসন্ধান করে মাদীয় প্রদেশের অক্মথা দুর্গে প্রাচীন তুলোট কাগজে লেখা একটি সরকারি নথি পাওয়া গেল যাতে রাজা কোরস জেরুশালেমে মন্দির নির্মাণের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন|নথিতে এইরূপে লেখা ছিল: 3 কোরস তাঁর রাজা হওয়ার প্রথম বছরে জেরুশালেমের মন্দির সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছিলেন| আদেশটি ছিল এইরূপ:“ঈশ্বরের জন্য মন্দিরটি আবার বানানো হোক| এই মন্দিরে ঈশ্বরের জন্য উত্সর্গ নিবেদন করা হবে| এই মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করা হোক| মন্দিরটি 90 ফুট চওড়া ও উচ্চতায় 90 ফুট হবে| 4 মন্দিরকে ঘিরে তিন সারি বড় পাথরের দেওয়াল ও একসারি বড় কাঠের গুঁড়ির দেওয়াল থাকবে| মন্দির নির্মাণের ব্যয় বহন হবে রাজার কোষাগার থেকে| 5 নবূখদ্নিত্সর য়ে সব সোনা এবং রূপো লুণ্ঠন করে বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন সেগুলি সব অবশ্যই ঈশ্বরের মন্দিরে ফেরত্ পাঠাতে হবে| 6 আমি, দারিয়াবস, ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যপাল তত্তনয়কে, শথর-বোষণয়কে ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের জেরুশালেম থেকে সরে য়েতে আদেশ দিচ্ছি| 7 এই ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ করবার চেষ্টা করো না| কর্মীদের বিরক্ত করো না| ইহুদীদের রাজ্যপাল এবং ইহুদীদের নেতারা আদিস্থানের ওপর মন্দির পুননির্মাণ করুক| 8 এখন আমি এই আদেশ করছি য়ে তোমরা এসব কাজ ইহুদী নেতাদের জন্য করবে, যারা মন্দির নির্মাণের কাজে লিপ্ত| মন্দির নির্মাণের খরচ আসবে রাজার কোষাগার থেকে এবং ঐ অর্থ আসবে ফরাত্ নদীর পশ্চিম পারের অঞ্চলে সংগৃহীত কর থেকে| এই সব নির্দেশগুলি তাড়াতাড়ি পালন কর যাতে কাজটি বন্ধ না হয়ে যায়| 9 স্বর্গের ঈশ্বরের মন্দিরে উত্সর্গ করবার জন্য যা যা লাগবে সবই ওদের দাও| জেরুশালেমের যাজকদের যদি ষাঁড়, মেষ, পাঁঠা, এমন কি গম, নুন, দ্রাক্ষারস অথবা তেল এসবের প্রয়োজন হয় তবে এসবই ওদের প্রত্যেক দিন দিও; এর য়েন অন্যথা না হয়| তাহলে তারা হয়ত স্বর্গের ঈশ্বরকে সুগন্ধ সম্বলিত হোম উত্সর্গ করবে এবং ঈশ্বরের কাছে আমার ও আমার পুত্রদের জন্য প্রার্থনা করবে| 10 11 আমি এও আদেশ দিচ্ছি, “কেউ যদি এই আদেশ বদলে দেয় তবে তার বাড়ীর থেকে একটি কড়ি কাঠ খুলে নেওয়া হবে, এবং সেই ব্যক্তিকে ঐ কড়ি কাঠে ফাঁসি দেওয়া হবে এবং তার বাড়ীটি ধ্বংস করে একটি বারোযারী শৌচালয়ে পরিনত করা হবে| 12 ঈশ্বর তাঁর নাম জেরুশালেমে রেখে দেবেন| কোন রাজা অথবা দেশ অথবা কেউ যদি এই আদেশ বদলাবার চেষ্টা করে অথবা জেরুশালেমে মন্দির ধ্বংস করবার চেষ্টা করে তাহলে য়েন ঈশ্বর তাদের পরাজিত ও ধ্বংস করেন|আমি, দারিয়াবস এই আদেশ দিয়েছি| এই আদেশ অতি সত্ত্বর এবং সম্পূর্ণভাবে পালন করা চাই| 13 তখন ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যপাল তত্তনয়, শথর-বোষণয় ও তাঁর লোকরা রাজা দারিয়াবসের আদেশ তাড়াতাড়ি ও পুরোপুরিভাবে মেনে নিলেন| 14 ইহুদীদের প্রবীণরা ভাব্বাদী হগয় ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয়ের ভবিষ্যতবাণীর দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উত্সাহিত হয়ে মন্দির নির্মাণের কাজ চালিযে গেলেন| ইস্রায়েলের ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে এবং পারস্যের বিভিন্ন রাজা কোরস, দারিয়াবস এবং অর্তক্ষস্তের নির্দেশ পালন করে তাঁরা মন্দির নির্মাণের কাজে সাফল্যলাভ করেছিলেন| 15 দারিয়াবসের রাজত্বের ষষ্ঠ বছরের অদর মাসের তৃতীয় দিনে মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছিল| 16 ইস্রায়েলের বাসিন্দারা মন্দির উত্সর্গীকরণের উত্সবটি আনন্দ সহকারে পালন করল| বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়া সমস্ত যাজকগণ ও লেবীয়রাও উত্সবে য়োগদান করলেন| 17 100টি ষাঁড়, 200 টি মেষ, 400টি পুরুষ মেষশাবক বলি দিয়ে মন্দিরটিকে প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত করা হল| এছাড়াও ইস্রায়েলের পাপস্খালনের জন্য 12টি ছাগল বলি দেওয়া হল| ইস্রায়েলের 12টি পরিবারের প্রত্যেকটির জন্য 12টি ছাগল উত্সর্গ করা হয়েছিল| 18 এরপর তারা জেরুশালেমের মন্দিরে ঈশ্বরের সেবার জন্য তাদের দল অনুযায়ী মোশির পুস্তকে লিপিবদ্ধ নির্দেশ অনুযায়ী যাজকগণ ও লেবীয়দের বেছে নিলেন| 19 প্রথম মাসের চৌদ্দ দিনের মাথায় বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইহুদীরা নিস্তারপর্ব পালন করলেন| 20 যাজক ও লেবীয়রা সকলে পরিচ্ছন্ন হয়ে বিশেষ দিনটির জন্য প্রস্তুত হলেন| লেবীয়রা বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইহুদীদের সকলের জন্য, তাঁদের নিজেদের জন্য এবং তাঁদের যাজক ভাইদের জন্য নিস্তারপর্বের উত্সর্গীকৃত মেষটিকে বলি দিলেন| 21 এরপর বন্দীদশা থেকে ইস্রায়েলে ফিরে আসা সকলে মিলে সেই মেষের মাংস গ্রহণ করলেন| ঐ শহরের অন্য লোকরাও ঐ দেশেরই বাসিন্দা অন্য লোকদের অপবিত্রতা থেকে নিজেদের পবিত্র করে ঐ মেষের মাংস গ্রহণ করলেন| তাঁরা সকলে ঈশ্বরের সামনে প্রার্থনা করার জন্য নিজেদের পবিত্র করলেন| 22 এই সমস্ত ব্যক্তিরা সাতদিন ধরে মহানন্দে খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করলেন| ঈশ্বর তাদের সকলকে আনন্দিত করে তুললেন কারণ তিনি অশূররাজের মনোবৃত্তিতে পরিবর্তন এনেছিলেন এবং তার ফলে অশূর-রাজতাঁদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজে সমর্থন জানিয়েছিলেন|
1 এসব ঘটনা ঘটে যাবার পর, পারস্যের রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে ইষ্রা বাবিল থেকে জেরুশালেমে এলেন| ইষ্রা ছিলেন সরায়ের পুত্র| সরায অসরিয়ের, অসরিয় হিল্কিয়ের, 2 হিল্কিয় শলূ্লুমের, শলূ্লুম সাদোকের, সাদোক অহীটূবের, 3 অহীটূব অমরিযের, অমরিয অসরিয়ের, অসরিয় মরাযোতের, 4 মরাযোত্ সরহিয়ের, সরহিয উষির, উষি বুক্কির পুত্র| 5 বুক্কি ছিলেন অবীশূয়ের পুত্র, অবীশূয় ছিলেন পীনহসের পুত্র, পীনহস ছিলেন ইলিয়াসরের পুত্র, এবং ইলিয়াসর ছিলেন প্রধান যাজক হারোণের পুত্র| 6 শিক্ষক ইষ্রা, বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন| মোশির ঈশ্বরদত্ত অনুশাসন সম্পর্কে তাঁর সুগভীর ব্যুত্পত্তি ছিল| রাজা অর্তক্ষস্ত ইষ্রাকে তাঁর অনুরোধ অনুসারে সমস্ত প্রয়োজনীয জিনিষ দিয়েছিলেন কারণ প্রভু ইষ্রার সঙ্গে ছিলেন| 7 ইস্রায়েলের বহু মানুষ য়েমন, যাজকগণ, লেবীয়গণ, গীতকারগণ, দ্বাররক্ষীগণ, প্রভৃতি ব্যক্তিরা ইষ্রার সঙ্গে ইস্রায়েলে এসেছিলেন| এই সমস্ত ব্যক্তিরা রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালের সপ্তম বর্ষে জেরুশালেমে এসে পৌঁছেছিলেন| 8 ইষ্রা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালের সপ্তম বর্ষের পঞ্চম মাসে এসেছিলেন| 9 ইষ্রা ও তাঁর দল ওই বছরের প্রথম মাসে বাবিল ত্যাগ করে এবং পঞ্চম মাসের প্রথম দিন জেরুশালেমে এসে উপস্থিত হন| 10 ইষ্রা প্রভুর বিধিগুলি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জনের জন্য তাঁর জীবনের সমস্ত সময় ব্যয় করেন| তিনি ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর বিধি ও আদেশগুলি শেখাতে ও সম্পাদন করাতে চেষ্টা করেছিলেন| 11 ইষ্রা ছিলেন একজন যাজক ও শিক্ষক যাঁর ইস্রায়েলের প্রতি প্রদত্ত ঈশ্বরের আদেশ ও বিধি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ছিল| রাজা অর্তক্ষস্ত ইষ্রাকে এই চিঠিটি লিখেছিলেন: 12 রাজা অর্তক্ষস্তের কাছ থেকে:যাজক ইষ্রা, যিনি স্বর্গের প্রভুর বিধির একজন শিক্ষক,তাঁকে রাজা অর্তক্ষস্তের অভিনন্দন! 13 আমি এই আদেশ দিচ্ছি: য়ে কোন ইস্রায়েলীয়, কোন যাজক অথবা য়ে কোন লেবীয় যারা আমার রাজত্বে বসবাস করে, তারা কেউ যদি ইষ্রার সঙ্গে জেরুশালেমে য়েতে চায় তো য়েতে পারে| 14 ইষ্রা, তোমাকে আমি ও আমার সাতজন মন্ত্রীর দায়িত্ব দিলাম, তুমি অতি অবশ্য যিহূদা ও জেরুশালেমে গিয়ে বয়ং পর্য়বেক্ষণ করবে, সেখানে তোমার ব্যক্তিবর্গ ঈশ্বরের বিধিগুলি কতদূর পালন করছে| আর সেই বিধি তো তোমার সঙ্গেই আছে| 15 আমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য তোমার সঙ্গে য়ে সোনা ও রূপো দিলাম, তুমি তা জেরুশালেমে ঈশ্বরের জন্য নিয়ে যাবে| 16 এছাড়াও, তোমাকে যদি কেউ জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য উপহার দিতে চায় এবং তোমার লোকেদের এবং বাবিলের য়ে কোন প্রদেশে বসবাসকারী যাজকগণ ও লেবীয়দের সব উপহারও তোমাকে সংগ্রহ করে নিয়ে য়েতে হবে| 17 এই সমস্ত অর্থ দিয়ে তুমি বৃষ, মেষ ও মেষশাবক এবং শস্য ও পানীয় কিনবে| অতঃপর জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দিরের বেদীতে এই সমস্ত নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে| তুমি এবং অন্যান্য ইহুদীরা বাকী সোনা ও রূপো য়েমন খুশী খরচ করতে পারো, কিন্তু এমনভাবে খরচ করবে যাতে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন| এ সমস্ত জিনিষ জেরুশালেমে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে যাবে| এগুলো সব প্রভুর উপাসনার জন্য ব্যবহৃত হবে| এছাড়া মন্দিরের প্রয়োজনে আর যা কিছু লাগবে, রাজকোষ থেকে অর্থ চেযে কিনে নেবে| 18 19 20 21 আমি, রাজা অর্তক্ষস্ত, ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের য়েসব ব্যক্তিবর্গের কাছে রাজকোষের অর্থ থাকে, তাদের নির্দেশ দিচ্ছি, ইষ্রার যখন যা অর্থের প্রয়োজন হয় তা য়েন তাঁকে দেওয়া হয় কারণ তিনি যাজক ও স্বর্গের ঈশ্বরের বিধিগুলির একজন শিক্ষক| 22 আপাতত তাঁকে 3 3,4 টন রূপো, 600 বুশেল গম, 600 গ্যালন দ্রাক্ষারস, 600 গ্যালন জলপাই তেল ও পর্য়াপ্ত পরিমাণ লবণ দেওয়া হোক| 23 স্বর্গের ঈশ্বর ইষ্রাকে যা কিছু নিতে আদেশ দিয়েছেন তা য়েন তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া হয়| আমি আমার সন্তান ও রাজত্বের বিরুদ্ধে স্বর্গের ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করতে চাই না, সুতরাং প্রভুর মন্দিরের জন্য এই সব নির্দেশগুলি য়েন পালন করা হয়| 24 হে আমার দেশবাসীগণ, আমি তোমাদের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই য়ে যাজকগণ, লেবীয়গণ, গায়ক, দ্বাররক্ষী, মন্দিরের সেবাদাস ও ঈশ্বরের মন্দিরের অন্য য়ে কোন কর্মীর কাছ থেকে কর গ্রহণ অবৈধ| রাজাকে সম্মান দেখানোর জন্য প্রভুর দাসদের কোন কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই| 25 হে ইষ্রা, ঈশ্বর ও তাঁর বিধি সম্পর্কে তোমার যথেষ্ট জ্ঞান আছে| সুতরাং ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের লোকদের বিচার ব্যবস্থা ও শাসনকর্ম দেখার জন্য, আমি তোমাকে তোমার পছন্দ অনুযায়ীশাসনকর্তা ও বিচারকবর্গ নিয়োগের ক্ষমতা দিলাম| ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গ তোমার প্রভুর বিধি অনুযায়ীএই অঞ্চলের বিচারবিভাগীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম সম্পাদন করবেন| 26 এমন কেউ যদি থাকেন, য়ে ঈশ্বরের বিধি সম্পর্কে অবগত নয় তাহলে ঐ বিচারকবর্গ তাকে ঈশ্বরের বিধি সম্পর্কে শিক্ষা দান করবে| কোন ব্যক্তি যদি বিধিগুলি লঙঘন করে, তাহলে তাকে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ীমৃত্যুদণ্ড, নির্বাসন বা কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হবে বা জরিমানা করা হবে| 27 প্রভু মহিমাময়, আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর! জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের প্রতি সম্মান জ্ঞাপনের জন্য ঈশ্বর রাজার হৃদয়ে তাঁর অভিলাষ স্থাপন করলেন| 28 রাজা তাঁর মন্ত্রীবর্গ ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে প্রভু আমার প্রতি তাঁর সত্যিকারের ভালবাসা অভিব্যক্ত করেছিলেন| প্রভু আমার সহায় হয়েছিলেন এবং তাই আমি সাহসী হয়ে আমার সঙ্গে জেরুশালেমে ফিরে যাবার জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত নেতাদের একত্রিত করেছিলাম|
1 রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে য়ে সব পরিবারের প্রধানরা আমার সঙ্গে বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন নীচে তাঁদের নামের তালিকা দেওয়া হল: 2 পীনহসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে গের্শোম, ঈথামরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে দানিয়েল, দায়ূদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে হটূশ, 3 শখনিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে পরোশ, সখরিয় ও আরো 150 জন পুরুষ, 4 পহত্ মোয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে সখরিয়র পুত্র ইলীযৈনয় ও আরো 200 জন পুরুষ, 5 জট্টর উত্তরপুরুষদের মধ্যে মহসীযেলের সন্তান শখনিয় ও আরো 300 জন পুরুষ, 6 আদীনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়োনাথনের পুত্র এবদ ও আরো 50 জন পুরুষ, 7 এলমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে অথলিয়ের পুত্র যিশায়াহ ও আরো 70 জন পুরুষ, 8 শফটিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মীখায়েলের পুত্র সবদিয় ও আরো 80 জন পুরুষ, 9 য়োয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যিহিয়েলের পুত্র ওবদিয় ও আরো 218 জন পুরুষ, 10 বানির উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়োষিফিযের পুত্র শলোমীত ও আরো 160 জন পুরুষ, 11 ব্বেয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে ব্বেয়ের পুত্র সখরিয় ও আরো 28 জন পুরুষ, 12 অস্গদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে হকাটনের পুত্র য়োহানন ও আরো 110 জন পুরুষ, 13 অদোনীকামের শেষ উত্তরপুরুষদের মধ্যে ইলীফেলট, য়িযূয়েল, শময়িয় ও আরো 60 জন পুরুষ, 14 এবং বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে ঊথয়, সব্বূদ ও তার সঙ্গী 70 জন পুরুষ| 15 আমি এই সমস্ত ব্যক্তিদের অহবা-গামিনী নদীর কাছে জড় হতে বলেছিলাম| সেখানে তাঁবু খাটিয়ে আমরা তিন দিন ছিলাম| আমি কয়েকজন যাজককে সেখানে দেখলাম, কিন্তু কোন লেবীয়কে নয়| তাই আমি 16 ইলীয়েষর, অরীয়েল, শময়িয়, ইল্নাথন, যারিব, ইল্নাথন, নাথন, সখরিয় ও মশুস্কলূ্লম প্রভৃতি নেতৃবৃন্দকে এবং 17 য়োয়ারীব ও ইল্নাথন নামে দুজন শিক্ষককে ডেকে কাসিফিয়া নগরের প্রধান ইদ্দোরের কাছে তাঁকে ও তাঁর লোকদের কি বলতে হবে তার নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলাম যাতে ইদ্দো আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরে কাজ করার মত কিছু সহকারী পাঠাতে পারেন| 18 য়েহেতু ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন ইদ্দো নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের আমাদের কাছে পাঠালেন:মহলির উত্তরপুরুষ শেরেবিয় (মহলি ছিলেন একজন লেবি| লেবি ছিল ইস্রায়েলের সন্তান|) শেরেবিয়র সঙ্গে তার পুত্ররা এবং ভাযেরা মোট 18 জন পুরুষ এসেছিল| 19 হশবিয় ও তার সঙ্গে মরারির সন্তান যিশায়াহ এবং তাদের ভায়েরা ও ছেলেরা, মোট 20 জন পুরুষ| 20 তারা 220 জন মন্দির কর্মীও পাঠিয়েছিল| (তাদের পূর্বপুরুষরা লেবীয়দের সাহায্য করবার জন্য দায়ূদ ও তাঁর কর্মচারীবর্গদ্বারা নিযুক্ত হয়েছিলেন| তাদের নাম তালিকা ভুক্ত ছিল|) 21 অহবা নদীর কাছে আমি ঘোষণা করলাম, ঈশ্বরের কাছে আমাদের বিনীত প্রতিপন্ন করার জন্য আমরা সকলে উপবাস করব| ঈশ্বরের কাছে আমরা আমাদের ও আমাদের সন্ততিদের এবং আমাদের বিষয় সম্পত্তির নিরাপদ যাত্রার জন্য প্রার্থনা করতে চেয়েছিলাম| 22 আমি আমাদের নিরাপত্তার জন্য রাজার কাছ থেকে আমাদের সঙ্গে আসবার জন্য সৈন্য ও অশ্বারোহী চাইতে অত্যন্ত ষ্ঠিধা বোধ করেছিলাম| কারণ আমরা রাজাকে বলেছিলাম, “যারা প্রভুতে বিশ্বাস করে ও তাঁর প্রতি আস্থা রাখে, আমাদের প্রভু সদা তাদের সহায় হন| কিন্তু য়েসব ব্যক্তি তাঁর থেকে দূরে সরে যায় ঈশ্বর তাদের প্রতি রুদ্ধ হন|” 23 আমরা তাই উপবাস করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম এবং তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন| 24 এরপর আমি যাজকদের মধ্যে থেকে শেরেবিয, হশবিয় যারা নেতৃস্থানীয় ছিল ও তাদের 10 জন ভাই প্রমুখ মোট 12 জন যাজককে বেছে নিয়েছিলাম| 25 রাজা অর্তক্ষস্ত, তাঁর উপদেষ্টাগণ, তাঁর প্রধানরা এবং বাবিলের সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা সেই উপহারগুলি ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য দিলেন| এবং বাবিলের লোকদের কাছ থেকে আমরা সব সোনা এবং রূপো ওজন করে, মন্দিরের কাজের জন্য ঐ বারো জনকে দিলাম| 26 সব মিলিয়ে 25 টন রূপো, 3 3,4 টন রূপোর থালা ও 3 3,4 টন সোনা ছিল| 27 এছাড়াও আমরা প্রায় 19 পাউণ্ড ওজনের 20টি সোনার বাসন ও দুর্মূল্য 2টি পিতলের থালা দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, 28 “তোমরা প্রভুর কাছে পবিত্র| এই সামগ্রীগুলিও প্রভুর কাছে পবিত্র| এই সমস্ত সোনা এবং রূপো লোকরা প্রভুকে দান করেছিল, সেই প্রভু যিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর| 29 যাও এই সমস্ত বস্তু রক্ষা কর| জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের নেতৃবর্গকে দেওয়ার আগে পর্য়ন্ত এইসমস্ত সম্পদের দায়িত্ব তোমাদের| ইস্রায়েলের প্রধান পরিবারবর্গের নেতা ও লেবীয়দের হাতে এই সমস্ত কিছু তুলে দেবে| তারা ওজন করে এই সমস্ত জিনিস জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের ঘরের ভেতরে তুলে রাখবেন|” 30 তখন যাজক ও লেবীয়রা, জেরুশালেমের মন্দিরের জন্য ইষ্রার দেওয়া সামগ্রীগুলি গ্রহণ করল| 31 প্রথম মাসের দ্বাদশ দিনে আমরা অহবা নদীর কাছ থেকে জেরুশালেম অভিমুখে যাত্রা শুরু করলাম| ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন| তিনি আমাদের পথে শএুদের ও দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করলেন| 32 এরপর আমরা জেরুশালেমে পৌঁছলাম| সেখানে তিন দিন বিশ্রাম নিলাম| 33 চতুর্থ দিন আমরা মন্দিরে গেলাম এবং দুর্মূল্য বস্তুগুলি ওজন করে যাজক ঊরীয়ের পুত্র মরেমোতকে দিলাম| মরেমোতের সঙ্গে পীনহসের পুত্র ইলিয়াসর এবং য়েশূয়ের পুত্র য়োষাবদ ও বিন্নূযির পুত্র নোয়দিয় নামে দুই লেবীয় ছিল| 34 আমরা সামগ্রীগুলি ওজন করে মোট ওজনের পরিমাণ নথিভুক্ত করেছিলাম| 35 এরপর, য়ে সব ইহুদীরা নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছিল, তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে হোমবলি নিবেদন করল| তারা ইস্রায়েলের মঙ্গলের জন্য 12টি বৃষ, 96টি মেষ, 77টি মেষশাবক ও পাপমোচনের জন্য 12টি পুরুষ ছাগলও বলিদান করল| 36 এরপর আমরা ফরাত্ নদীর পশ্চিম তীরস্থ প্রাদেশিক নেতাদের ও রাজ্যপালদের হাতে রাজার চিঠিটি তুলে দিলাম| তারপর এই সমস্ত নেতারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা ও মন্দিরের সহায়তা করেন|
1 এসব হয়ে যাবার পর ইস্রায়েলীয় লোকদের নেতারা আমাকে এসে বললেন, “ইষ্রা, ইস্রায়েলের লোকরা এখানে বসবাসকারী অন্যান্য ব্যক্তিদের থেকে নিজেদের পৃথক রেখে বাস করেনি| ইস্রায়েলীযরা কনানীয, হিত্তীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিশরীয় এবং ইমোরীয় প্রভৃতি অন্য জাতির লোকদের অসত্ কার্য়্য়কলাপে প্রভাবিত| এই ভাবে তারা অন্য বংশের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়| ইস্রায়েলীয় বিশেষ জন বলে গণ্য হবার কথা, কিন্তু এখন অন্তর্বিবাহের দরুণ তাদের অন্য জাতির সঙ্গে মিশ্রণ হয়েছে| ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ ও প্রশাসকরাই এই ধরণের বিয়ে করে অপরাপরদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে|” 2 3 আমি যখন একথা জানতে পারলাম, তখন দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য আমি আমার পোশাক, চুল, দাড়ি ছিঁড়ে ফেললাম, এবং বিষণ্ন ও অত্যন্ত স্তম্ভিত হয়ে বসে পড়লাম| 4 তখন ধর্মভীরু সমস্ত ব্যক্তি ভয়ে কাঁপতে শুরু করল| ওরা ভয় পেয়েছিল কারণ বন্দীদশা থেকে মুক্তিলাভ করে য়েসব ইহুদীরা ফিরে এসেছিল, তারা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত ছিল না| ক্ষুদ্ধ ও বিমূঢ় অবস্থায় আমি বৈকালিক উত্সর্গ অনুষ্ঠান পর্য়ন্ত বসে থাকলাম| ওই সমস্ত ব্যক্তিরা আমার চারপাশে জড়ো হল| 5 আমি যতক্ষণ ওখানে বসেছিলাম, নিজেকে যতদূর সম্ভব লজ্জিত দেখাতে চেষ্টা করছিলাম| এরপর বৈকালিক প্রার্থনার সময় আমি উঠে দাঁড়ালাম| নোংরা ও ছেঁড়া পরিধেয় সহ আমি হাঁটু গেড়ে বসে, দুহাত প্রসারিত করে আমার 6 প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বললাম: হে আমার ঈশ্বর, তোমার দিকে ফিরে তাকাতেও আমি লজ্জা বোধ করছি| আমি লজ্জিত কারণ আমাদের পাপকর্ম আমাদের মাথা ছাড়িযে গেছে| আমাদের অপরাধ স্বর্গ পর্য়ন্ত পৌঁছেছে| 7 আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে শুরু করে আজ পর্য়ন্ত আমরা বহু পাপে পাপী| আমাদের পাপের জন্য আমাদের রাজাদের, যাজকদের এবং আমাদের শাস্তিভোগ করতে হয়েছে| বিভিন্ন বিদেশী শাসক আমাদের লুঠ করে আমাদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছে| ঐ বিদেশী আক্রমণকারীরা আমাদের সম্পদ লুঠ করেছে| আজ পর্য়ন্ত সেই একই পুরানো ঘটনা ঘটে চলেছে| 8 কিন্তু এখন অল্প সময়ের জন্য তুমি আমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেছ| তুমি আমাদের বন্দী ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে এই পবিত্রস্থানে এসে বাস করার সুযোগ করে দিয়েছ| প্রভু, তুমি আমাদের দাসত্ব থেকে এক নতুন জীবন দান করেছ| 9 হ্যাঁ, আমরা দাস ছিলাম, কিন্তু তুমি আমাদের দাস থাকতে দেবে না বলে পারস্যের রাজাদের দয়ালু করে আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ প্রকাশ করেছ| তোমার মন্দিরটি য়েটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেটি গড়বার জন্য তুমি আমাদের নবজীবন দান করেছ| যিহূদা ও জেরুশালেমকে রক্ষার্থে তুমি আমাদের একটি দেওয়াল তুলতে সাহায্য করেছ| 10 হে ঈশ্বর, তোমাকে আমরা আর কি বলতে পারি? আমরা আবার তোমার প্রতি অবাধ্য হয়েছি| 11 হে ঈশ্বর, তুমি তোমার ভাব্বাদীদের মাধ্যমে আমাদের আদেশ করেছ: “য়ে ভূখণ্ডতে তোমরা আপনজ্ঞানে থাকতে চলেছ সেটি ধ্বংসাবশেষ মাত্র| এই ভূখণ্ডটি এখানে বসবাসকারী বাসিন্দাদের অসত্ কর্মের জন্য ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে| এখানকার বাসিন্দারা এই ভূখণ্ডকে অপবিত্র করেছে| 12 অতএব, ইস্রায়েলের লোকরা, তোমরা য়েন তোমাদের সন্তানসন্ততিদের ওই সব লোকদের সন্তানসন্ততিকে বিয়ে করতে দিও না| ওদের সঙ্গে কথাও বলো না| আমার আদেশ শুনলে তোমরা বলিষ্ঠ হয়ে উঠবে এবং এই ভূখণ্ডের যাবতীয় ভালো জিনিষ উপভোগ করতে পারবে এবং তোমাদের সন্তানসন্ততিদের হাতে এই ভূখণ্ডটি তুলে দিতে পারবে|” 13 আমরা নিজেরাই এই অবস্থার জন্য দাযী| আমরা পাপাচরণ করেছি এবং আমরা অপরিসীম দোষী| কিন্তু তুমি আমাদের অনেক কম দণ্ডে দণ্ডিত করেছ| আমাদের অনেক মারাত্মক পাপের জন্য আমাদের খুব কঠিন শাস্তি প্রাপ্য ছিল| তা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বন্দীদশা থেকে মুক্তি দিয়েছ| 14 অতএব তোমার আদেশ আমাদের অমান্য করা উচিত্ নয়| আমাদের ওই সমস্ত লোকদের সঙ্গে অন্তর্বিবাহ করা উচিত্ নয় যারা খারাপ কাজ করে| আমরা জানি য়ে আমরা যদি ওদের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্ক চালিয়ে যাই, তাহলে, হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের ওপর খুব রেগে যাবে এবং যতদিন না সমস্ত ইস্রায়েলীয নির্বংশ হবে তত দিন আমাদের ধ্বংস করবে| 15 হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি এত ভালো য়ে আমরা এত দোষ করা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বেঁচে থাকতে দিয়েছ| আমরা দোষী, তাই সে কারণে আমাদের কারোরই তোমার সামনে দাঁড়াবার কথা নয়|”
1 প্রভুর মন্দিরের সামনে কাঁদতে কাঁদতে ইষ্রা প্রার্থনা করছিলেন ও দোষ স্বীকার করছিলেন| সেই সময়ে বহু ইস্রায়েলীয নারী, পুরুষ ও শিশু তাঁর চারপাশে জড়ো হয়েছিল| তারাও কাঁদছিল| 2 তখন এলামের একজন উত্তরপুরুষ য়িহীযেলের পুত্র শখনিয়, ইষ্রাকে বলল, “আমরা ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করেছি এবং আমাদের আশেপাশে বসবাসকারী অন্যান্য জাতির বংশের লোকদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেছি, তবুও আমার মনে হয় এখনো ইস্রায়েলের সব আশা হারিযে যায়নি| 3 এখন আমরা ঈশ্বরের সামনে একটি চুক্তি করি য়ে এইসব বিজাতীয় স্ত্রীলোক ও তাদের সন্তানদের আমরা ফেরত্ পাঠিয়ে দেব| ইষ্রার উপদেশ মেনে চলবার জন্য ও য়েসব ব্যক্তি আমাদের ঈশ্বরের প্রতি আস্থাবান তাঁদের অনুসরণ করবার জন্য আমরা এই কাজ করব এবং আমরা ঈশ্বরের বিধান মেনে চলবো| 4 ইষ্রা, আপনি উঠে দাঁড়ান এবং শক্ত হোন| ঈশ্বরের বিধির প্রতি আমাদের আস্থাবান করে তোলার য়ে ব্রত আপনি নিয়েছেন তা সফল করে তুলতে আমরা আপনাকে সহায়তা করব|” 5 ইষ্রা উঠে দাঁড়ালেন এবং প্রতিজ্ঞা অনুযায়ীপ্রধান যাজকগণ, লেবীয় ও ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের শপথ গ্রহণ করালেন| 6 এরপর ইষ্রা ইলিয়াশীবের পুত্র য়িহোহাননের ঘরে প্রবেশ করলেন| য়েটুকু সময় ইষ্রা ওখানে ছিলেন, উনি কোন খাবার খেলেন না বা কিছু পান করলেন না, কারণ প্রত্যাগত বন্দীদের ঈশ্বরের বিধির প্রতি অনাস্থা বশতঃ তিনি তখনও দুঃখিত ও শোকসন্তপ্ত ছিলেন| 7 অতঃপর তিনি ইহুদী ও জেরুশালেমের সর্বত্র একটি বার্তা পাঠালেন| সেই বার্তায তিনি বন্দীত্ব থেকে মুক্তি লাভ করা সমস্ত ইহুদীদের জেরুশালেমে এসে সমবেত হতে বললেন| 8 য়ে সব ব্যক্তি তিনদিনের মধ্যে এসে উপস্থিত হবে না তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং সেই ব্যক্তিকে সে য়ে দলের সঙ্গে বাস করে তার থেকেও বহিষ্কার করা হবে| প্রধান আধিকারিক ও নেতৃবৃন্দরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন| 9 তিন দিনের মধ্যে ইহুদী ও বিন্যামীনের পরিবারের সমস্ত ব্যক্তি জেরুশালেমে জড়ো হল| এবং নবম মাসের কুড়ি দিনের মাথায় তারা মন্দির প্রাঙ্গণে সমবেত হল| তারা সকলে এই সমাবেশের কারণে ও প্রবল বর্ষণের জন্য কাঁপছিল| 10 তখন ইষ্রা উঠে দাঁড়ালেন এবং সেই সমাবেশকে সম্ভাষণ করলেন, “তোমরা সকলে ঈশ্বরের বিধি অমান্য করে তাঁর প্রতি অনাস্থা দেখিয়েছিলে এবং তোমরা বিজাতীয নারীদের বিয়ে করে ইস্রায়েলকে আরো দোষী করেছ| 11 এখন তোমরা ঈশ্বরের সামনে তোমাদের পাপ স্বীকার করো| প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তাঁর বিধি তোমাদের অবশ্য পালনীয| এই ভূখণ্ডে তোমাদের আশেপাশের বিজাতীয় ব্যক্তি বর্গের সঙ্গে তোমরা সমস্ত রকম সম্পর্ক ত্যাগ কর এবং তোমাদের বিদেশী স্ত্রীদের থেকে তোমরা নিজেদের আলাদা করে নাও|” 12 তখন ওখানে সমবেত সমস্ত ব্যক্তি সমস্বরে চিত্কার করে ইষ্রাকে বলল: “আপনি ঠিকই বলেছেন| আপনি যা বলছেন তা আমাদের অবশ্যই পালন করা উচিত্| 13 এখানে অনেক ব্যক্তি আছে আর এই বৃষ্টির মধ্যে আমাদের পক্ষে বাইরে থাকা সম্ভব নয়| এই সমস্যাটির সমাধানও দু-একদিনের মধ্যে সম্ভব নয় কারণ আমরা গুরুতর পাপাচরণ করেছি| 14 আমাদের নেতারাই আমাদের পুরো দলের জন্য এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক| তারপর তাদের বিদেশী স্ত্রীলোকদের, যাদের তারা বিয়ে করেছিল, তাদের ফেরত্ পাঠাবে, তারা তাদের জন্য নির্দ্দিষ্ট সময়ে জেরুশালেমে আসবে| প্রতিটি শহর থেকে প্রধান নেতারা এবং বিচারকগণ ঐ লোকদের সঙ্গে আসবেন| তাঁরা এরকম করে যাবেন যতক্ষণ না সবাই এসে যাবে| তাহলে ঈশ্বর আমাদের প্রতি রুদ্ধ হওয়া থেকে বিরত হবেন|” 15 অসাহেলের পুত্র য়োনাথন, তিক্বের পুত্র যহসিয়, মশুল্লম ও লেবীয় শব্বথয এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করল| 16 অতঃপর জেরুশালেমে প্রত্যাবর্তনকারী ইহুদীরা পরিকল্পনাটিকে গ্রহণ করতে সম্মত হল| যাজক ইষ্রা পরিবার নেতাদের বেছে নিলেন, প্রতিটি পরিবারবর্গ থেকে একটি করে মানুষের নাম বাছা হল এবং তাঁরা দশম মাসের প্রথম দিনে একত্র হয়ে প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করলেন| 17 দশম মাসের প্রথম দিনে ওই বাছাই করা ব্যক্তিগণ য়ে সব লোকরা অন্তর্বিবাহ করেছে তাদের সম্পর্কে পর্য়ালোচনা করবার জন্য একসঙ্গে বসলেন| 18 নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা য়ে সব যাজক বিদেশী স্ত্রীলোকদের বিবাহ করেছিল, তাদের উত্তরপুরুষ:যিহোষাদকের পুত্র য়েশূয় ও তার ভাইরা মাসেয়, ইলীয়েষর, যারিব ও গদলিয়| 19 এঁরা সকলে তাঁদের স্ত্রীদের পরিত্যাগ করতে সম্মত হলেন| তারপর তাঁরা পাপস্খালনের বলিদানের জন্য একটি করে মেষও উত্সর্গ করেছিলেন| 20 হনানি ও সবদিয় ছিল ইম্মেরের পুত্র| 21 হারীমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মাসেয়, এলিয়, শময়িয়, যিহীয়েল ও উষিয়; 22 পশহূরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: ইলিযৈনয়, মাসেয়, ইশ্মায়েল, নথনেল, য়োষাবদ ও ইলিয়াসা; 23 লেবীয়দের মধ্যে: য়োষাবদ, শিমিয়ি ও কলায় বা কলীট, পথাহিয়, যিহূদা ও ইলিয়েষর; 24 গায়কদের মধ্যে ইলীয়াশীব; দ্বারপালদের মধ্যে শস্কলূ্লুম, টেলম ও ঊরি; 25 ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে: পরিয়োসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে রমিয়, যিষিয়, মল্কিয়, মিয়ামীন, ইলিয়াসর, মল্কিয় ও বনায়; 26 এলমের পুত্রদের মধ্যে মত্তনিয়, সখরিয়, যিহীয়েল, অব্দি, যিরেমোত্ ও এলিয়| 27 সত্তূর পুত্রদের মধ্যে ইলিযৈনয়, ইলিয়াশীব, মত্তনিয়, যিরেমোত্, সাবদ ও অসীসা; 28 ব্বেয়ের পুত্রদের মধ্যে যিহোহানন, হনানিয়, সব্বয় ও অত্লয়; 29 বানির পুত্রদের মধ্যে মশুল্লম, মলূ্লূক, অদায়া, যাশূব, শাল ও য়িরমোত্| 30 পহত্- মোয়াবের পুত্রদের মধ্যে অদ্ন, কলাল, বনায়, মাসেয়, মত্তনিয়, বত্সলেল, বিন্নূয়ী ও মনঃশি; 31 হারীমের পুত্রদের মধ্যে ইলিয়েষর, যিশিয়, মল্কিয়, শময়িয়, শিমিয়োন, 32 বিন্যামীন, মলূ্লূক, শমরিয়; 33 হশূমের পুত্রদের মধ্যে মত্তনয়, মত্তত্ত, সাবদ, ইলীফেলট, যিরেময়, মনঃশি ও শিমিয়ি; 34 বানির পুত্রদের মধ্যে মাদয়, অম্রাম, ঊয়েল, 35 বনায়, বেদিয়া, কলূহূ, 36 বনিয়, মরেমোত্, ইলিয়াশীব, 37 মত্তনিয়, মত্তনয় এবং যাসয়, 38 বিন্নূয়ীর পুত্রদের মধ্যে শিমিয়ি, 39 শেলিমিয়, নাথন, অদায়া, 40 মকদ্বয়, শাশয়, শারয়, 41 অসরেল, শেলিমিয, শমরিয়, 42 শলূ্লুম, অমরিয় এবং য়োষেফ; 43 নবোর উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়িযীযেল, মত্তিথিয়, সাবদ, সবীনঃ, যাদয় য়োযেল ও বনায়| 44 এরা সকলেই বিদেশী স্ত্রীলোকদের বিবাহ করেছিল এবং এদের মধ্যে অনেকের স্ত্রীই সন্তানদের জন্ম দিয়েছিল|
1 এগুলি হখলিয়ের পুত্র, নহিমিয়ের গল্প: রাজা অর্তক্ষস্তর রাজত্বের 20 বছরের মাথায়, কিশ্লেব মাসে আমি শূশনের রাজধানীতে ছিলাম| 2 এসময়ে হনানি নামে আমার এক ভাই ও আরো কিছু ব্যক্তি যিহূদা থেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল| আমি তখন তাদের জেরুশালেম শহরটি সম্পর্কে ও য়ে সব ইহুদীরা বন্দীদশা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছিল এবং তখনও যিহূদায় ছিল, তাদের সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম| 3 হনানি ও তার সঙ্গে য়ে লোকরা ছিল তারা আমাকে বলল, “য়ে সমস্ত ইহুদী বন্দীদশা এড়াতে পেরেছিল এবং যিহূদায় বাস করছে, তারা সংকট ও লজ্জার মধ্যে দিয়ে বাস করছে| কেন? কারণ জেরুশালেমের প্রাচীর ভেঙে পড়েছে এবং দরজাগুলি আগুনে পুড়ে গেছে|” 4 জেরুশালেম ও সেখানকার বাসিন্দাদের সম্পর্কে একথা শোনার পর আমার খুবই মন খারাপ হয় এবং আমি বসে পড়ে কাঁদতে শুরু করি| ভারাএান্ত মনে, আমি কিছুদিন ধরে উপবাস করতে ও স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে শুরু করলাম| 5 এই বলে আমি প্রার্থনা করেছিলাম:“হে প্রভু, স্বর্গের ঈশ্বর, আপনি মহান ও ক্ষমতাবান| যারা আপনাকে ভালবাসে ও বিশ্বস্ত ভাবে আপনার আজ্ঞা পালন করে তাদের সঙ্গে আপনি আপনার ভালবাসার চুক্তি সব সময়ে বজায় রাখেন| হে প্রভু অনুগ্রহ করে আপনার ভক্তের প্রার্থনা শ্রবণ করন| 6 আমি আপনার সামনে আপনার দাস, ইস্রায়েলের লোকদের জন্য প্রার্থনা করছি| আমরা, ইস্রায়েলের লোকরা, আপনার বিরুদ্ধে য়ে পাপসমূহ করেছি আমি তা স্বীকার করছি| আমি ও আমার পিতৃপুরুষরা য়ে পাপ করেছি তাও স্বীকার করছি| 7 আমরা, ইস্রায়েলীয়রা আপনার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছি| আপনি আপনার দাস মোশিকে য়ে সকল আজ্ঞা শিক্ষামালা ও বিধি দিয়েছিলেন তা আমরা পালন করি নি| 8 হে প্রভু, আপনার দাস মোশিকে আপনি য়ে নির্দেশগুলি দিয়েছিলেন দয়া করে তা স্মরণ করুন| আপনি বলেছিলেন, “তোমরা, ইস্রায়েলের লোকরা যদি আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হও তাহলে আমি তোমাদের বিভিন্ন জাতি সমূহের মধ্যে ছড়িয়ে দেব| 9 কিন্তু তোমরা যদি আমার কাছে ফিরে আস এবং আমার আদেশগুলি মেনে চলো, তাহলে তোমাদের মধ্যে যারা পৃথিবীর প্রান্ত দেশে নির্বাসিত হয়ে রযেছ তাদের আমি জড়ো করব এবং য়ে জায়গাটি আমি আমার নাম স্থাপন করার জন্য মনোনীত করেছি সেই জায়গায তাদের ফিরিযে আনব|” 10 ইস্রায়েলীয়রা আপনার দাস ও আপনার লোক| আপনি আপনার মহান ক্ষমতা প্রয়োগ করে এদের রক্ষা করেছেন| 11 হে প্রভু, আপনাকে আমার বিনীত অনুরোধ আপনি আমার, আপনার দাসের এবং য়েসব দাসেরা আপনার নামের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চায়, তাদের প্রার্থনা শুনুন| হে প্রভু, আপনি জানেন, আমি রাজার পানপাত্রবাহক|আজ আমি যখন কৃপাপ্রার্থী হিসেবে রাজার সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে যাব আপনি আমার সহায় থাকবেন, যাতে রাজা আমাকে অনুগ্রহ করেন|”
1 রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বের 20তম বছরের নীসন মাসে, যখন রাজাকে দ্রাক্ষারস নিবেদন করা হল, আমি দ্রাক্ষারসটি নিলাম এবং রাজাকে দিলাম| এর আগে তার সঙ্গে থাকাকালীন রাজা কখনও আমাকে বিষাদগ্রস্ত দেখেন নি, কিন্তু সেদিন আমি সত্যিই বিষাদগ্রস্ত হয়েছিলাম| 2 রাজা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কি শরীর খারাপ? তোমাকে এতো বিষাদগ্রস্ত লাগছে কেন? মনে হচ্ছে, তোমার হৃদয় বিষাদে পরিপূর্ণ|”তখন আমি খুব ভয় পেলেও রাজাকে বললাম, 3 “মহারাজ দীর্ঘজীবি হোন! আমার মন ভারাএান্ত কারণ য়ে শহরে আমার পূর্বপুরুষরা সমাধিস্থ, সেই শহর আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেই শহরের ফটকগুলি আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়েছে|” 4 তখন রাজা আমাকে রশ্ন করলেন, “তুমি আমাকে দিয়ে কি করাতে চাও?”আমি আমার ঈশ্বরকে প্রার্থনা করে 5 রাজাকে বললাম, “রাজা যদি আমাকে নিয়ে সত্যিই খুশী থাকেন এবং তাঁর যদি ইচ্ছে হয়, তবে দয়া করে আমাকে যিহূদায় জেরুশালেমে পাঠান য়ে শহরে আমার পূর্বপুরুষরা সমাধিস্থ হয়েছিলেন যাতে আমি শহরটি আবার গড়ে তুলতে পারি|” 6 মহারাজের পাশেই রাণী বসেছিলেন| তাঁরা দুজন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার এই সফরের জন্য কত সময় লাগবে? কবে আবার তুমি এখানে এসে পৌঁছতে পারবে?”রাজা য়েহেতু আমায় খুশি মনে বিদায দিলেন, আমি তাঁকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিলাম| 7 আমি রাজাকে এও জিজ্ঞাসা করলাম, “রাজা যদি সন্তুষ্ট থাকেন, দয়া করে আমাকে কয়েকটি চিঠি দিন যাতে যিহূদা যাওয়ার পথে ফরাত্ নদীর পশ্চিম পারের অঞ্চল পার হবার সময় আমি রাজ্যপালদের দেখাতে পারি| 8 এছাড়াও আপনার বনবিভাগের আধিকারিক আসফকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি চিঠিও আমার দরকার, যাতে সে আমাকে শহরের ফটকগুলি, শহরের প্রাচীরসমূহ, মন্দিরের দেওয়ালসমূহ ও আমার নিজের বাসস্থান নির্মাণের জন্য আমাকে কাঠ দেয়|” রাজা আমাকে সব কিছু রয়োজনীয় চিঠি দিয়ে অনুগৃহীত করলেন| ঈশ্বর আমার প্রতি সদয ছিলেন বলেই রাজা আমার জন্য এসব করেছিলেন| 9 তারপর আমি যখন ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলে এলাম, সেখানকার রাজ্যপালদের আমি পত্রগুলি দেখালাম| রাজা আমার সঙ্গে কয়েক জন সামরিক পদস্থ ব্যক্তি ও অশ্বারোহী সৈন্যও পাঠিয়েছিলেন| 10 আধিকারিকগণ, হোরোণের সন্বল্লট ও অম্মোনের এীতদাস টোবিয যখন আমার আসার খবর পেল এবং শুনল যে ইস্রায়েলীয়দের আমি সাহায্য করতে এসেছি তখন তারা বিরক্ত ও রুদ্ধ হল| 11 জেরুশালেমে তিন দিন থাকার পর আমি এক রাতে কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে বেরোলাম| জেরুশালেমের জন্য কি করার কথা ঈশ্বর আমার হৃদয়ে রেখেছিলেন সে কথা আমি কারো কাছেই প্রকাশ করিনি| যে ঘোড়াটিতে আমি চড়েছিলাম, সেটি ছাড়া আমার কাছে আর কোন ঘোড়া ছিল না| 12 13 যখন রাত হল, আমি উপত্যকার ফটকের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে এসে নাগকূপ ও ছাইগাদার ফটকের দিকে গেলাম| আমি নগরীর ভেঙে যাওয়া প্রাচীর এবং আগুনে ভস্মীভূত প্রাচীরের দরজাগুলি পরিদর্শন করছিলাম| 14 এরপর আমি ঝর্ণার ফটক ও রাজ পুষ্করিণীতে এসে পৌঁছলাম| সেখানে আমার ঘোড়ার যাবার কোন রাস্তা ছিল না| 15 তাই আমি রাতে দেওয়ালগুলো পর্য়বেক্ষণ করতে করতে উপত্যকার ওপর দিক পর্য়ন্ত গেলাম এবং দেওয়ালটি বরাবর এগিয়ে গেলাম যতক্ষণ না উপত্যকার ফটকে এসে পৌঁছলাম| তারপর শহরে ফিরে গেলাম| 16 আমি কোথায কোথায গিয়েছিলাম সেকথা আধিকারিকরা বা ইস্রায়েলের গন্যমাণ্য ব্যক্তিরা জানতেন না| আমি তখনও পর্য়ন্ত ইহুদীদের, যাজকদের, রাজপরিবারদের, আধিকারিকদের বা অন্যদের কাছে যারা কাজটি করবে, আমি কি করতে যাচ্ছি সে সম্পর্কে কিছুই প্রকাশ করিনি| 17 পরে আমি তাদের বললাম, “তোমরা সকলেই দেখতে পাচ্ছ আমরা কি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি| জেরুশালেম শহর আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এর ফটকগুলি আগুনে পুড়ে গেছে| এসো, আমরা আবার জেরুশালেমের দেওয়াল গেঁথে ফেলি তাহলে আর আমাদের লজ্জার কোন কারণ থাকবে না|’ 18 আমি তাদের এও বললাম যে ঈশ্বর আমার মঙ্গল করেছিলেন| রাজা আমায় কি বলেছেন, সে কথাও তাদের জানালাম| তখন লোকরা বলে উঠল, “চলো আমরা পুনর্নিমাণের কাজ শুরু করি!” তাই তারা এই ভাল কাজের প্রস্তুতিতে নিজেদের উত্সাহ দিল| 19 কিন্তু হোরোণের সন্বল্লট, অম্মোনের এীতদাস টোবিয ও আরবীয গেশম আমাদের বিদ্রূপ করে জিজ্ঞেস করল, “তোমরা কি করছো? তোমরা কি রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছো?” 20 তখন আমি তাদের বললাম: “আমরা, ঈশ্বরের সেবকরা, এই শহর আবার গড়ে তুলবো| একাজে সফল হতে স্বর্গের ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করবেন| তোমাদের পরিবারের কেউ জেরুশালেমে বাস করেনি| তোমরা কেউ আমাদের একাজে সাহায্য করতে পারবে না| এ ভূখণ্ডের সামান্যতম অংশও তোমাদের নয়| এখানে থাকার তোমাদের কোন অধিকার নেই|”
1 মহাযাজক ইলীয়াশীব ও তাঁর যাজক ভাইরা কাজ শুরু করলেন এবং মেষ-দ্বারটি নির্মাণ করলেন| তারপর তাঁরা ঈশ্বরের কাছে সেটি পবিত্র বস্তু হিসেবে উত্সর্গীকৃত করলেন এবং তাঁরা দরজাগুলি দেওয়ালের গায়ে যথাস্থানে স্থাপন করলেন| তাঁরা একশো স্তম্ভ এবং হননেলের স্তম্ভ পর্য়ন্ত জেরুশালেমের প্রাচীর নির্মাণ করলেন এবং তাঁদের কাজ ঈশ্বরকে উত্সর্গ করলেন| 2 যাজকের পাশের দেওয়ালটি বানালেন য়িরীহোর বাসিন্দারা| আর তার পাশেরটি বানালেন ইম্রির পুত্র সক্কূর| 3 হস্সনাযার পুত্রগণ মত্স্য-দ্বারটি আবার বানাল| তারা বর্গাগুলি যথাস্থানে বসালো, ইমারতটিতে দরজা বসালো এবং তাতে ছিটকিনি ও তালাচাবি লাগালো| 4 দেওয়ালের পরের অংশটি হক্কোসের পৌত্র, ঊরিযের পুত্র মরেমোত্ পুনর্নিমাণ করল|তারপর মশুল্লম, বেরিখিযের পুত্র মশেষবেলের পৌত্র, পরেরটি মেরামত্ করল এবং তারপর দেওয়ালের পরের অংশটি বানার পুত্র সাদোক মেরামত্ করল| 5 দেওয়ালের পরের অংশটি যদিও তকোযার ব্যক্তিরা মেরামত্ করল কিন্তু তাদের নেতৃবর্গ তাদের রাজ্যপাল নহিমিয়র জন্য কোন কাযিক পরিশ্রম করতে অস্বীকার করল| 6 পুরোনো ফটকটি পাসেহের পুত্র যিহোয়াদা ও বসোদিযার পুত্র মশুল্লম মেরামত করল| তারা যথাস্থানে কড়ি-বর্গা বসিযে দরজায কব্জৃা লাগিয়ে তাতে তালা এবং ছিটকিনি সংয়োগ করল| 7 গিবিয়োনীয় মলাটিয ও মেরোণোথীয যাদোন এবং গিবিয়োন ও মিস্পার অন্য লোকরা দেওয়ালের পরের অংশটি মেরামত্ করল| গিবিয়োন ও মেরোণোথ পশ্চিম ফরাত্ জেলার রাজ্যপালের দ্বারা শাসিত হত| 8 এরপরের অংশটি হর্হযের পুত্র উষীযেল মেরামত্ করল| উষীযেল ছিল একজন স্বর্ণকার| হনানিয সুগন্ধ বানাত এবং সে পরের অংশটি মেরামত্ করল| ঐসব লোকরা দেওয়ালটিকে প্রশস্ত প্রাচীর অবধি গাঁথল| 9 পরের অংশটি মেরামত্ করল হূরের পুত্র রফায| রফায জেরুশালেমের অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| 10 এরপর হরূমফের পুত্র য়িদায একেবারে নিজের বাড়ির উলেটাদিক পর্য়ন্ত দেওয়ালটি বানালো| পরের অংশটি বানালো হশব্নিযের পুত্র হটুশ| 11 হারীমের পুত্র মল্কিয ও পহত্- মোয়াবের পুত্র হশূব পরের অংশটি এবং চুল্লী-গম্বুজও মেরামত্ করল| 12 হলোহেশের পুত্র শল্লুম তার কন্যাদের সাহায়্য়ে দেওয়ালের পরের অংশটি তৈরী করল| শল্লুম জেরুশালেমের অপর অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| 13 হানূন নামে এক ব্যক্তি এবং সানোহের লোকরা উপত্যকার ফটকটি মেরামত্ করল| তারা দরজাটি কব্জার ওপর বসিযে তাতে তালা-চাবি দিল এবং ছাইগাদা-ফটক পর্য়ন্ত 500 গজ দেওয়াল মেরামত্ করল| 14 মল্কিয ছিল রেখবের পুত্র এবং বৈত্হক্কেরমের রাজ্যপাল| সে ছাইগাদার ফটকটি মেরামত্ করল এবং ছিটকিনি ও তালাসহ দরজাটি কব্জার ওপর বসাল| 15 কল্হোষির পুত্র শল্লুম ঝর্ণা-ফটকটি মেরামত্ করল| শল্লুম ছিলেন মিস্পা জেলার রাজ্যপাল| তিনি ফটকটি মেরামত্ করলেন এবং তার মাথায় একটি ছাদ বানালেন| তিনি এর দরজাগুলি তালা ও ছিটকিনিসহ বসালেন| এছাড়া, শল্লুম রাজবাগিচার পাশে শীলোহ পুকুরের দেওয়ালও মেরামত্ করলেন| দেওয়ালটি দায়ূদ নগরের যেখান থেকে যে সিঁড়ি নেমে এসেছে সেখান পর্য়ন্ত তিনি মেরামত্ করলেন| 16 দেওয়ালের পরের অংশটি অস্বূকের পুত্র নহিমিয় মেরামত্ করল| নহিমিয় বৈত্সূর জেলার অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| তিনি দায়ূদের পরিবারের সমাধিগুলোর উলেটাদিক পর্য়ন্ত এবং মানুষের দ্বারা তৈরী পুকুর এবং “বীর-গৃহ” পর্য়ন্ত কাজ করলেন| 17 দেওয়ালের পরের অংশ বানির পুত্র রহূমের নির্দেশে লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীরা বানাল| হশবিয দেওয়ালের পরের অংশটি মেরামত্ করল| তিনি কিযীলা প্রদেশের অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| তিনি তার নিজের জেলাতেও মেরামত্ করলেন| 18 দেওয়ালের পরের অংশ তাঁদের ভাইরা মেরামত্ করেছিল| তারা হেনাদদের পুত্র বিন্নুই এর অধীনে কাজ করেছিল| বিন্নুই কিযীলার অপর অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| 19 এর পরের অংশ যেশূযের পুত্র এসর মেরামত্ করলেন| এসর মিস্পার রাজ্যপাল ছিলেন| তিনি অস্ত্রাগার থেকে প্রাচীরের একটি কোণ পর্য়ন্ত দেওয়াল মেরামত্ করেছিল| 20 সব্বয়ের পুত্র বারূক এক কোণ থেকে মহাযাজক ইলিয়াশীবের বাড়ির দরজা পর্য়ন্ত দেওয়ালের অংশটি মেরামত্ করেছিল| 21 ইলিয়াশীবের বাড়ির প্রবেশপথ থেকে বাড়ির অন্য প্রান্ত পর্য়ন্ত দেওয়ালের অংশটি হক্কোসের পৌত্র, ঊরিযের পুত্র মরেমোত্ মেরামত্ করল| 22 পরের কিছুটা অংশ ওই অঞ্চলে বসবাসকারী যাজকরা মেরামত্ করলেন| 23 বিন্যামীন ও হশূব যে যার নিজের বাড়ির সামনের দেওয়ালটুকু ঠিক করার পর অননিয়ের পৌত্র ও মাসেযের পুত্র অসরিয়ও নিজের বাড়ির সামনের দেওয়ালটুকু মেরামত্ করল| 24 হেনাদদের পুত্র বিন্নূযী অসরিয়ের বাড়ি থেকে শুরু করে দেওয়ালের বাঁক হয়ে কোণ পর্য়ন্ত অংশটি তুলে ফেলল| 25 উষযের পুত্র পালল দেওয়ালের বাঁকে স্তম্ভের কাছে যেটি উচ্চ প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে এসেছে, যেটি আবার রাজার প্রহরীর উঠোনের কাছে অবস্থিত সেই খানে দেওয়াল তুলল| পরোশের পুত্র পদায পাললের পরে কাজ করল| 26 মন্দিরের দাসরা ওফল পাহাড়ের ওপর বাস করছিল| তারা স্তম্ভের কাছে জলদ্বারের পূর্বাংশ পর্য়ন্ত মেরামতের কাজগুলি করল| 27 তকোযীর লোকরা বড় স্তম্ভটি থেকে শুরু করে ওফলের দেওয়াল পর্য়ন্ত দেওয়ালের বাদবাকি অংশটি মেরামত্ করল| 28 যাজকরা অশ্ব-দ্বারের ওপরের অংশ বানিয়ে ফেলল| প্রত্যেক যাজক যে যার নিজের বাড়ির দেওয়াল গাঁথল| 29 এরপর ইম্মেরের পুত্র সাদোক নিজের বাড়ির সামনের দেওয়াল ও শখনিয়ের পুত্র শময়িয় দেওয়ালের তারপরের অংশটুকু মেরামত্ করে নিল| সে ছিল পূর্বদ্বারের জনৈক প্রহরী| 30 শেলিমিযের পুত্র হনানিয ও সালফের পুত্র হানূন (হানূন ছিল সালফের য়ষ্ঠ পুত্র) দেওয়ালের পরের অংশ মেরামত্ করল|বেরিখিযের পুত্র মশুল্লম তার নিজের বাড়ির সামনে দেওয়ালের অংশ মেরামত্ করল| 31 মল্কিয নামে এক স্বর্ণকার পর্য়বেক্ষণ দ্বারের বিপরীতে মন্দির দাস ও ব্যবসাযীদের বাড়ি পর্য়ন্ত অংশের দেওয়াল মেরামত্ করল| 32 বাকী অংশ অর্থাত্ কোণের দিকে ওপরের ঘর থেকে মেষদ্বার পর্য়ন্ত অংশ স্বর্ণকাররা ও ব্যবসাযীরা মেরামত্ করল|
1 আমরা দেওয়াল পুননির্মাণ করছি, একথা জানতে পেরে সন্বল্লট খুবই রুদ্ধ হল| সে তখন ইহুদীদের নিয়ে হাসা-হাসি করল| 2 সন্বল্লট তার বন্ধুদের ও শমরীয সেনাদলের সামনেই কথা বলছিল, “এই দুর্বল ইহুদীগুলো কি করছে? ওরা কি ভাবছে যে আমরা ওদের ছেড়ে দেব? ওরা কি বেদীতে বলি চড়াবে? ওরা কি মনে করে যে এক দিনেই ওরা নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারবে? ওরা কি আবর্জনা আর ধূলোর গাদা থেকে এই পোড়া পাথরগুলিকে আবার জীবন্ত করে তুলতে পারবে?” 3 সেই সময়, অম্মোনীয়র টোবিয সন্বল্লটের সঙ্গে ছিল| সে বলল, “যে দেওয়ালটা ওরা বানাচ্ছে ওটার ওপর একটা ছোট শেযালও যদি ওঠে ওটা ভেঙে পড়বে!” 4 নহিমিয় তখন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন, “হে ঈশ্বর তুমি দয়া করে আমাদের ডাকে সাড়া দাও| এই সমস্ত ব্যক্তিরা আমাদের ঘৃণা করে| সন্বল্লট ও টোবিয আমাদের অপমান করছে| তুমি তাদের এর যথায়োগ্য শাস্তি দাও| ওদের বন্দী করার ব্যবস্থা করো, যাতে ওরা লজ্জিত হয়| 5 তোমার চোখের সামনে ওরা যে অপরাধ করেছে তা তুমি ক্ষমা কর না| ওরা দেওয়াল নির্মাতাদের অপমান করেছে ও তাদের নিরুত্সাহ করেছে|” 6 যদিও আমরা জেরুশালেমের চারপাশের দেওয়াল বানালাম কিন্তু দেওয়ালের উচ্চতা যা হওয়া উচিত্ ছিল মোটে তার অর্ধেক হল| লোকরা উদ্যম আর ইচ্ছা নিয়ে কাজ করেছে| 7 সন্বল্লট, টোবিয, আরবীয, অম্মোনীয় ও অস্দোদীযরা খুব রেগে গেল কারণ ওরা শুনেছিল যে জেরুশালেমের দেওয়ালের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে এবং গর্ত ভরাট করা হচ্ছে| 8 তারপর তারা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে চএান্ত করার পরিকল্পনা করল| তারা সবাই পরিকল্পনা করল যে তারা আসবে ও জেরুশালেমের বিরুদ্ধে লড়াই করবে এবং তার বিরুদ্ধে গোলমাল করবে| 9 কিন্তু আমরা আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে দিবারাত্র দেওয়ালের চারপাশে কড়া পাহারার ব্যবস্থা করলাম যাতে আমরা এই সব বহিঃশএুদের প্রয়োজনে বাধা দিতে পারি| 10 সে সময় যিহূদার লোকেরা বলল, “কর্মীরা সকলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং ওখানে সরাবার মতো এত নোংরা আছে যে আমরা দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারব না|” 11 আর আমাদের শএুরা বলছে, ‘ইহুদীরা এ সম্বন্ধে অবগত হবার আগে অথবা আমাদের দেখতে পাবার আগে, আমরা তাদের মধ্যে গিয়ে তাদের হত্যা করব, এবং এই ভাবেই তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যাবে|”‘ 12 তারপর যে সব ইহুদী আমাদের শএুদের মধ্যে থাকত তারা এলো এবং আমাদের দশ বার বলল, ‘আমাদের শএুরা আমাদের চারদিকে রযেছে| আমরা যে দিকেই ফিরি না কেন সে দিকেই শএুরা রযেছে|’ 13 আমি তখন কিছু ব্যক্তিকে প্রাচীরের নিম্নতম অংশে রাখার ব্যবস্থা করলাম| আমি পরিবারগুলিকে তলোয়ার, বল্লম ও তীর-ধনুক সহ দেওয়ালের গর্তের কাছে এক সঙ্গে দাঁড় করিযে দিলাম| 14 তারপর সমস্ত ব্যবস্থা ও পরিস্থিতি খতিযে দেখবার পর, আমি গুরুত্বপূর্ণ পরিবারগুলিকে, আধিকারিকদের এবং সমস্ত বাকি লোকদের উত্সাহ দিয়ে বললাম, “আমাদের শএুদের ভয় পেযো না| মনে রেখো আমাদের প্রভু মহান এবং ভয়ঙ্কর!” 15 আমাদের শএুপক্ষ খবর পেল যে আমরা তাদের চএান্তের কথা জেনে ফেলেছি| ঈশ্বর তাদের সমস্ত মতলব বানচাল করে দিয়েছেন| আবার আমাদের লোকরা তাদের নিজেদের জায়গায ফিরে গিয়ে দেওয়ালের কাজ শুরু করল| 16 তখন থেকে আমাদের লোকদের অর্ধেক সংখ্যক দেওয়াল নির্মাণের কাজে নিযুক্ত রইল আর বাকি অর্ধেক বল্লম, বর্ম, তীর এবং বর্ম নিয়ে প্রহরায নিযুক্ত হল| সেনাধ্যক্ষরা যিহূদার লোকদের পেছনে এসে দাঁড়ালেন যেহেতু তারা দেওয়াল নির্মাণ করছিল| 17 মিস্ত্রি ও তাদের য়োগানদাররা এক হাতে তাদের য়ন্ত্রপাতি এবং অন্য হাতে অস্ত্রও ধরেছিল| 18 কাজ করার সময়ও প্রত্যেকটি নির্মাণকারী কোমরবন্ধে তরবারি ঝুলিয়ে রাখতো| লোকদের সতর্ক করে দেবার জন্য যার শিঙা বাজানোর কথা সে আমার পাশে পাশে থাকত| 19 আমি তখন আধিকারিকবর্গ, গুরুত্বপূর্ণ পরিবার ও বাকি লোকদের সঙ্গে কথা বললাম| আমি বললাম, “এই দেওয়াল জুড়ে এখনও অনেক কাজ করা বাকি আছে আর আমরা একে অন্য়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি|” 20 কিন্তু একে অপরের থেকে কাজের সময় যত দূরেই থাকো না কেন, শিঙার আওয়াজ শুনলেই সকলে দ্রুত এক জায়গায জড়ো হবে| ঈশ্বর বয়ং আমাদের য়ুদ্ধে সাহায্য করবেন|” 21 অতএব আমরা সূর্য়াস্ত থেকে সূর্য়োদয পর্য়ন্ত জেরুশালেমের দেওয়াল বানানোর জন্য কঠিন পরিশ্রম করছিলাম যখন কর্মীদের মধ্যে অর্ধেকরা হাতে বল্লম ধরেছিল| 22 আমি নির্মাতাদের এও বলেছিলাম, “প্রত্যেক নির্মাতা এবং তার সাহায্যকারী রাত্রে জেরুশালেমের ভেতরে থাকবে যাতে তারা রাত্রে পাহারাদার এবং দিনের বেলা কর্মী হতে পারে|” 23 অতএব আমি বা আমার ভাইরা, আমার লোকরা এবং প্রহরীরা কেউই স্নান করার জন্য বা কাপড় কাচার জন্য পোষাক খুলতে পারতাম না কারণ আমরা যখন জলের জন্য বেরোতাম তখনও আমাদের হাতে অস্ত্র থাকত|
1 অনেক দরিদ্র ইহুদী তাদের আত্মীযদের বিরুদ্ধে অভিয়োগ করতে শুরু করলো| 2 তাদের মধ্যে কয়েকজন অভিয়োগ করল, “আমাদের এতগুলি ছেলেমেযে; সুতরাং খেযেপরে বাঁচার জন্য আমাদের খাদ্য শস্যের প্রয়োজন!” 3 অন্য লোকরা বলল, “দুর্ভিক্ষের সময় শস্য পাবার জন্য আমরা আমাদের জমিজমা, দ্রাক্ষাক্ষেত এবং বাড়ি বন্ধক রেখেছিলাম|” 4 আবার আরেক দল বলতে শুরু করল, “আমাদের জোত জমি ও দ্রাক্ষাক্ষেতের ওপর ধার্য় রাজকর দেবার জন্য আমাদের অর্থ ধার করতে হয়েছিল| 5 আর এদিকে ঐসব ধনী লোকদের দেখো! আমরাও তো ওদেরই মতো মানুষ, আমাদের ছেলেমেয়েরাই বা ওদের থেকে কম কিসে? কিন্তু শেষ পর্য়ন্ত আমাদের ছেলেমেয়েদের দাসদাসী হিসেবে বিক্রি করে দিতে হবে! ইতিমধ্যেই অনেকে তা করতে শুরু করেছে, অথচ আমরা কিছুই করতে পারছি না| আমাদের ভূমি ও দ্রাক্ষাক্ষেত এখন অন্য লোকদের অধীনে!” 6 আমি যখন ওদের অভিয়োগগুলো শুনলাম তখন মহারুদ্ধ হলাম| 7 তারপর আমি নিজেকে শান্ত করে বিত্তবান পরিবার ও আধিকারিকবর্গের কাছে গিয়ে বললাম, “তোমরা তোমাদের নিজেদের লোকদের টাকা ধার দাও এবং তাদের কাছ থেকে সুদ আদায কর| তোমাদের অতি অবশ্য এ কাজ বন্ধ করতে হবে|” এরপর আমি সমস্ত ব্যক্তিদের এক জায়গায জড়ো করে বললাম, 8 “লোকরা আমাদের ইহুদী ভাইদের এীতদাস হিসেবে অন্য দেশসমূহে বিক্রি করে দিয়েছিল| বহু কষ্টে আমরা তাদের স্বাধীন করে দেশে ফিরিযে এনেছি আর এখন তোমরা নিজেরাই আবার তাদের এীতদাস হিসেবে বিক্রি করছো!”ধনী লোকরা ও আধিকারিকরা এই অভিয়োগ শুনে কিছু বলতে পারল না, চুপ করে থাকল| 9 তখন আমি তাদের বললাম, “তোমরা যা করছ, সেটা সঠিক কাজ নয়| তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভয় থাকা প্রয়োজন| অন্যান্য জাতিরা যে সব লজ্জাজনক কাজ করছে সেসব তোমাদের করা উচিত্ নয়| 10 আমার লোকরা, আমার ভাইরা, এমন কি আমিও, দরিদ্রদের টাকাপয়সা ও খাদ্যশস্য ধার দিচ্ছি| এসো আমরা তাদের যে টাকা ধার দিই তার থেকে সুদ নেওয়া বন্ধ করি| 11 তোমরা অতি অবশ্য দরিদ্র ব্যক্তিদের জমি-জমা, দ্রাক্ষাক্ষেত, বাড়ি ফেরত দিয়ে দেবে| এছাড়াও তোমরা, এদের টাকা-পয়সা, শস্য, দ্রাক্ষারস এবং তেল ধার দিয়ে তার ওপর এক শতাংশ হারে যে সুদ নিয়েছো তাও ফিরিযে দেবে|” 12 তখন ধনী ব্যক্তি সবাই আমাকে বলল, “নহিমিয় তুমি যা বললে তাই হবে| আমরা ওদের সব কিছু ফিরিযে দেব আর কখনও গরীব দুঃখীদের থেকে কিছু নেব না|”তারপর যাজকদের ডেকে ঈশ্বরের সামনে ধনী ও আধিকারিকরা যা বলেছে তা শপথ করালাম| 13 এরপর আমি আমার কাপড়ের ভাঁজ ঝাড়তে ঝাড়তে তাদের বললাম, “এই একই ভাবে তোমরা যারা এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে, তাদের প্রত্যেককে ঈশ্বর ধরে ঝাঁকাবেন| ঈশ্বর তাকে গৃহচ্যুত তো করবেনই উপরন্তু তার যা কিছু আছে সবই তাকে হারাতে হবে|”আমি আমার বক্তব্য শেষ করার পর উপস্থিত সকলে “আমেন” বলল| তারপর তারা সকলে প্রভুর প্রশংসা করল এবং এরা সকলেই তাদের কথা রেখেছিল| 14 রাজা অর্তক্ষস্তর রাজত্বের 20তম বছর থেকে 32তম বছর পর্য়ন্ত আমি যিহূদার রাজ্যপাল হিসেবে কাজ করছিলাম| সে সময় আমি বা আমার কোন ভাই রাজ্যপালের জন্য বরা? খাদ্য খাইনি| আমি কখনও দরিদ্র ব্যক্তিদের জোরজবর্দস্তি কর দিতে বাধ্য করে সে পয়সায নিজের খাবার কিনিনি| আমি অর্তক্ষস্তের রাজত্বের কুড়ি বছর থেকে বত্রিশ বছর পর্য়ন্ত অর্থাত্ মোট বারো বছর যিহূদার শাসক হিসেবে কাজ করেছিলাম| 15 যে সব রাজ্যপালরা আমার আগে শাসন করেছিলেন তাঁরা লোকদের জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছিলেন| এঁরা সকলেই প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে এক পাউণ্ড রূপোসহ খাবার ও দ্রাক্ষারস দাবী করতেন| নেতৃবর্গ, যারা ঐ সব রাজ্যপালদের অধীন ছিল তারাও লোকেদের শোষণ করত| কিন্তু যেহেতু আমার ঈশ্বরে ভয়-ভীতি আছে, আমি এই ধরণের কাজ করিনি| 16 আমি জেরুশালেমের দেওয়াল তোলবার জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিলাম| আমার সমস্ত লোকরাও এই কাজের জন্য একত্রে এসেছিল| আমরা কারো কাছ থেকে কোন জমি জমা কেড়ে নিই নি| 17 উপরন্তু আমি নিয়মিত ভাবে আমার টেবিলে 150 জন ইহুদী আধিকারিকদের খাওয়ার য়োগান দিয়েছিলাম| আর আমাদের আশেপাশের দেশ থেকে যে সব লোকরা আমার টেবিলের কাছে এসেছিল আমি তাদেরও খাবার সরবরাহ করতাম| 18 প্রতি দিন লোকদের খাওয়াবার জন্য আমি একটি গরু, ছয়টি মোটা মেষ এবং নানান ধরণের পাখি রান্না করার জন্য দিতাম| প্রতি দশদিন অন্তর আমি প্রভূত পরিমাণে সব রকমের দ্রাক্ষারস দিতাম| কিন্তু আমি কখনই শাসকের জন্য বরা? দামী খাবার-দাবার দাবি করিনি বা আমার খাবার কেনার জন্য প্রজাদের ওই সমস্ত কর দিতে বাধ্য করিনি| আমি জানতাম, দেওয়াল বানানোর জন্য সকলে কঠিন পরিশ্রম করছে| 19 হে ঈশ্বর, আমি এই সব লোকদের জন্য যা করেছি, তা মনে রেখো এবং আমাকে আশীর্বাদ করো|
1 তারপর সন্বল্লট, টোবিয ও গেশম নামে আরব ও আমাদের অন্যান্য শএুরা জানতে পারল যে আমি জেরুশালেমের দেওয়াল নির্মাণ করছিলাম| দেওয়ালের গায়ের গর্তগুলি ভরাট করা হলেও তখনও অবশ্য আমাদের দরজার পাল্লা বসানো বাকি ছিল| 2 অতএব সন্বল্লট ও গেশম তখন আমাকে একটি খবর পাঠাল: “চলো নহিমিয়: ওনো সমভূমির কেফিরিন শহরে আমরা সাক্ষাত্ করি|” কিন্তু ওরা আমার ক্ষতি করার পরিকল্পনা করেছিল| 3 কিন্তু আমি ওদের এই কথা বলে ফেরত পাঠালাম: “আমি খুব জরুরী কাজে ব্যস্ত আছি, তাই তোমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি কাজ বন্ধ করতে পারব না|” 4 সন্বল্লট ও গেশম আমাকে চারবার একই খবর পাঠিয়েছিল, কিন্তু আমি তাদের একই উত্তর দিয়েছিলাম| 5 তারপর পঞ্চমবার সন্বল্লট ওর নিজের এক সাহায্যকারীর মাধ্যমে আমাকে একই আমন্ত্রণ পাঠালো| 6 চিঠিটিতে লেখা ছিল: “চতুর্দিকে একটি গুজব ছড়াচ্ছে এবং এমনকি গেশমও বলেছে যে, তুমি ও ইহুদীরা নাকি রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনা করছ| যে কারণে নাকি তোমরা জেরুশালেম শহরের চারপাশে দেওয়াল তুলছ| জনসাধারণ বলছে, বিদ্রোহের পর তুমিই নাকি হবে ইহুদীদের নতুন রাজা| 7 গুজবে একথাও বলা হচ্ছে যে তোমার সম্বন্ধে এই কথা জেরুশালেমে ঘোষণা করতে তুমি ভাব্বাদীদের নিযুক্ত করেছ: ‘যিহূদায় এক রাজা আছেন!’“দেখো নহিমিয়, আমি তোমাকে সাবধান করে দিতে চাই যে শীগ্গিরই রাজা শীঘ্রই এসব খবর পেয়ে যাবেন| তাই বলছি, এসো আমরা এক সঙ্গে বসে এ বিষয়ে কথাবার্তা বলি|” 8 আমি তখন সন্বল্লটকে বলে পাঠালাম, “তুমি যা অভিয়োগ করেছ তার কোনটাই সত্যি নয়| তুমি তোমার নিজের মাথা থেকেই এই গল্পটা বানাচ্ছো|” 9 আসলে আমাদের শএুরা আমাদের ভয় দেখাতে চেষ্টা করছিল| ওরা ভাবছিল, “এসব করলে ইহুদীরা ভয় পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেবে আর দেওয়ালের কাজও শেষ হবে না|”কিন্তু আমি প্রার্থনা করেছিলাম, “হে ঈশ্বর, আমাকে শক্তি দাও|” 10 এক দিন আমি শময়িয়র সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে গেলাম| শময়িয় ছিল দলাযের পুত্র| দলায ছিল মহেটবেলের পুত্র| শময়িয় তার বাড়িতে ছিল| সে আমাকে বলল,“নহিমিয়, চল আমরা ঈশ্বরের মন্দিরে দেখা করি| চল আমরা পবিত্র স্থানের ভিতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিই, কারণ শএুরা আজ রাতে তোমাকে হত্যা করতে আসছে|” 11 আমি শময়িয়কে উত্তরে বললাম, “আমার মতো কোন ব্যক্তির কি পালিয়ে যাওয়া উচিত্? আমার মতো এক জন ব্যক্তির কি নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য পবিত্র স্থানের ভেতরে যাওয়া উচিত্? আমি যাব না!” 12 আমি জানতাম যে আমাকে সাবধান করতে ঈশ্বর শময়িয়কে পাঠান নি| আমি বুঝতে পারলাম যে সে আমার বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল কারণ টোবিয ও সন্বল্লট তাকে তা করার জন্য টাকা দিয়েছিল| 13 আমাকে ভয় দেখানোর জন্য ও মন্দিরের ভেতরে যেতে প্ররোচিত করবার জন্য শময়িয়কে টাকা দেওয়া হয়েছিল যাতে এই কাজ করে আমি পাপাচরণ করি তাহলে ওরা আমাকে অপদস্থ করবার জন্য বদনাম দিতে পারে| 14 হে ঈশ্বর, সন্বল্লট ও টোবিযকে এবং তারা যে মন্দ কাজগুলি করেছে তা অনুগ্রহ করে মনে রেখ| এমন কি ভাব্বাদিণী নোযদিযার কথা এবং অন্যান্য যে সমস্ত ভাব্বাদীরা আমাকে ভয় দেখাতে চেষ্টা করছে তাদের কথাও তুমি স্মরণে রেখো| 15 ইলূল মাসের 25 দিনের মাথায় জেরুশালেমের দেওয়াল গাঁথার কাজ শেষ হল| দেওয়াল নির্মাণ শেষ করতে 52 দিন লেগেছিল| 16 তখন আমাদের সমস্ত শএু ও আশেপাশের সব জাতিগুলি জানতে পারল যে দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে| তাই তারা তাদের সাহস হারিযে ফেলল| কেন? কারণ ওরা বুঝতে পেরেছিল, যে আমাদের ঈশ্বরের সহায়তাতেই একাজ শেষ হয়েছে| 17 এছাড়াও, সে সময়ে দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হবার পর, যিহূদার ধনী ব্যক্তিরা টোবিযকে চিঠি লিখত এবং টোবিয সেসব চিঠির জবাব দিত| 18 তারা ঐসব চিঠি লিখেছিল কারণ যিহূদাতে বহু লোক তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল| কারণ টোবিয, আরহের পুত্র শখনিয়ের জামাতা ছিল| উপরন্তু টোবিয়ের পুত্র য়িহোহানন বেরিখিযের পুত্র মশুল্লমের কন্যাকে বিয়ে করেছিল| 19 অতীতে তারা টোবিযর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাই এরা আমার কাছে বলেছিল টোবিয কত ভাল ছিল| আমার কার্য়কলাপ সম্পর্কে তারা টোবিযকে যাবতীয় খবরাখবর দিত| টোবিয আমাকে ভয় দেখানোর জন্য চিঠি পাঠানো অব্যাহত রেখেছিল|
1 আমাদের দেওয়াল বানানোর কাজ শেষ হল| তারপর আমরা দরজায পাল্লা বসালাম ও কারা সেই সব দরজায পাহারা দেবে তার জন্য লোক ঠিক করলাম| আমরা গায়কদের এবং লেবীয়দেরও নিযুক্ত করলাম| 2 এরপর আমি আমার ভাই হনানি ও হনানিয নামে আরেক ব্যক্তিকে যথাএমে জেরুশালেম শহরের দায়িত্ব ও দুর্গের সেনাপতির দায়িত্ব দিলাম| আমি আমার ভাই হনানিকে বেছে নিয়েছিলাম কারণ অন্যান্যদের থেকে সে খুবই সত্ ও তার ঈশ্বরে বেশী ভয় ছিল| 3 আমি তখন তাদের নির্দেশ দিলাম, “প্রতিদিন সূর্য়োদযের কয়েক ঘণ্ট্া পরে জেরুশালেমের ফটকগুলি খুলবে| আর সূর্য়াস্তের পূর্বেই তোমরা ফটক বন্ধ করে তালা লাগাবে| এছাড়াও, রক্ষী হিসেবে যাদের নিয়োগ করবে তারা যেন এ শহরেরই বাসিন্দা হয়| এই সমস্ত রক্ষীদের কয়েক জনকে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায পাহারা দিতে পাঠাবে আর বাদবাকিরা যেন তাদের বাড়ির কাছাকাছি অঞ্চলেই পাহারা দেয়|” 4 জেরুশালেম শহরটি খুবই বড়| শহরে অনেক জায়গা থাকলেও, তুলনায় বাসিন্দার সংখ্যা কম| বাড়ি-ঘরও তখন সমস্ত বানানো হয়নি| 5 এমতাবস্থায ঈশ্বর আমার হৃদয়ে সমস্ত বাসিন্দাদের একত্রিত করার বাসনা প্রবেশ করালেন| আমি তখন সমস্ত গন্যমাণ্য ব্যক্তি, আধিকারিকবর্গ ও সাধারণ লোক দের একসঙ্গে ডেকে পাঠালাম| বসবাসকারী সমস্ত ব্যক্তিদের একটি তালিকা বানানোই আমার মূল উ?শ্য ছিল| ইতিমধ্যে বন্দীদশা থেকে যারা প্রথম এ শহরে ফিরে এসেছিল তার একটি তালিকা আমি পেয়েছিলাম| তাতে লেখা ছিল: 6 এই ইহুদীরা বন্দীদশা থেকে জেরুশালেম এবং যিহূদায় ফিরে এসেছিল| রাজা নবূখদ্নিত্সর এদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলে| এরা হল: যেশূয, নহিমিয়, অসরিয়, রযমিযা, নহমানি, 7 মর্দখয়, বিল্শন, মিস্পরত্, বিগ্বয, নহূম ও বানা| তারা সরুব্বাবিলের সঙ্গে ফিরে এসেছিল| নীচে ইস্রায়েলের য়ে সমস্ত লোক ফিরে এসেছিল তাদের নাম ও সংখ্যা দেওয়া হল: 8 পরোশের উত্তরপুরুষ 2,172 9 শফটিযের উত্তরপুরুষ 372 10 আরহের উত্তরপুরুষ 652 11 য়েশূয় ও য়োয়াবের পরিবারগোষ্ঠীর পহত্-মোয়াবের উত্তরপুরুষ 2,818 12 এলমের উত্তরপুরুষ 1,254 13 সত্তূর উত্তরপুরুষ 845 14 সক্কয়ের উত্তরপুরুষ 760 15 বিন্নূয়ির উত্তরপুরুষ 648 16 ব্বেয়ের উত্তরপুরুষ 628 17 আস্গদের উত্তরপুরুষ 2,322 18 অদোনীকামের উত্তরপুরুষ 667 19 বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষ 2,067 20 আদীনের উত্তরপুরুষ 655 21 যিহিষ্কিয়ের বংশজাত আটেরের উত্তরপুরুষ 98 22 হশুমের উত্তরপুরুষ 328 23 বেত্সযের উত্তরপুরুষ 324 24 হারীফের উত্তরপুরুষ 112 25 গিবিয়োনের উত্তরপুরুষ 95 26 বৈত্লেহম ও নটোফা শহরের লোক 188 27 অনাথোত শহরের 128 28 বৈত্-অস্মাবত্ শহরের 42 29 কিরিযত্-য়িযারীম, কফীরা ও বেরোত শহরের 743 30 রামা ও গেবা শহরের 621 31 মিক্মস শহরের 122 32 বৈথেল ও অয শহরের 123 33 নবো শহরের 52 34 এলম শহরের 1,254 35 হারীম শহরের 320 36 য়িরীহো শহরের 345 37 লোদ, হাদীদ ও ওনো শহরের 721 38 সনায়া শহরের 3,930 39 যাজকগণ হল:য়েশূয়ের বংশজাত যিদয়িয়র উত্তরপুরুষ 973 40 ইম্মেরের উত্তরপুরুষ 1,052 41 পশ্হূরের উত্তরপুরুষ 1,247 42 হারীমের উত্তরপুরুষ 1,017 43 এরা হল লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোক:হোদবিয়র বংশজাত য়েশূয় ও কদ্মীয়েলের উত্তরপুরুষ 74 44 এরা হল গায়ক বৃন্দ:আসফের উত্তরপুরুষ 148 45 এরা হল দ্বার-রক্ষকগণ:শল্লুম, আটের, টল্মোন, অক্কুব, হটীটাও শোবয়ের উত্তরপুরুষ 138 46 এরা হল মন্দিরের বিশেষ দাস:সীহ, হসূফা ও টব্বায়োতের উত্তরপুরুষরা, 47 কেরোস, সীয় ও পাদোনের বংশধরবর্গ, 48 লবানা, হগাব ও শল্ময়ের বংশধরবর্গ, 49 হানন, গিদ্দেল ও গহরের বংশধরবর্গ, 50 রাযা, রত্সীন ও নকোদের বংশধরবর্গ, 51 গসম, ঊষ ও পাসেহের বংশধরবর্গ, 52 বেষয, মিযূনীম ও নফুষয়ীমের বংশধরবর্গ, 53 বকবূক, হকূফা ও হর্হূরের বংশধরবর্গ, 54 বসলীত, মহীদা ও হর্শার বংশধরবর্গ, 55 বর্কোস, সীষরা ও তেমহের বংশধরবর্গ, 56 নত্সীহ ও হটীফার বংশধরবর্গ| 57 শলোমনের উত্তরপুরুষ দাসদের মধ্যে:সোটয়, সোফেরত্ ও পরীদার বংশধরবর্গ, 58 যালা, দর্কোন ও গিদ্দেলের বংশধরবর্গ, 59 শফটিয়ের, হটীল ও পোখেরত্-হত্সবাযীম ও আমোন; 60 মন্দিরের দাস ও শলোমনের দাসদের উত্তরপুরুষ 392 61 কয়েক জন লোক তেল্মেলহ, তেল্হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মের শহর থেকে জেরুশালেমে এসেছিল| তাদের পরিবারগুলি ইস্রায়েল থেকে উদ্ভ্ূত কিনা তা তারা প্রমাণ করতে পারেনি|দলায়, টোবিয় ও নকোদের উত্তরপুরুষ 642 জন 62 63 এরা ছিল যাজক পরিবারের উত্তরপুরুষ:হবায়, হক্কোস ও বর্সিল্লয়ে| গিলিয়দের বর্সিল্লয পরিবারের কন্যাকে যদি একজন পুরুষ বিয়ে করত ওই পুরুষকে বর্সিল্লযদের উত্তরপুরুষ হিসাবে গণ্য করা হতো| 64 য়েহেতু তারা তাদের বংশতালিকা বা তাদের পূর্বপুরুষরা যাজক ছিলেন কিনা তা প্রমাণ করতে পারল না, সেহেতু যাজকদের তালিকায তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হল না| 65 রাজ্যপাল ওই সমস্ত ব্যক্তিদের, পবিত্র খাবার খেতে বারণ করলেন যতক্ষণ পর্য়ন্ত না প্রধান যাজক ঊরীম ও তুম্মীম ব্যবহার করে ঈশ্বরের কাছে জেনে নেন কি করতে হবে| 66 7,337 জন দাসদাসীকে বাদ দিলে, যারা ফিরে এসেছিল তাদের মধ্যে সব মিলিযে ছিল 42,360 জন| এছাড়াও, এদের সঙ্গে ছিল 245 জন গায়ক-গাযিকা, 67 68 তাদের 736 টি ঘোড়া, 245 টি খচচর, 435 টি উট ও 6,720 টি গাধা ছিল| 69 70 বেশ কিছু পরিবার প্রধান কাজ চালিয়ে যাবার জন্য অর্থ দান করেন| রাজ্যপাল বয়ং কোষাগারে 19 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা দিয়েছিলেন| এছাড়াও তিনি 50টি পাত্র ও যাজকদের পোশাকের জন্য 530 পোশাক দান করেন| 71 বিভিন্ন পরিবারের প্রধানরা কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য 375 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা এবং 1 1/3 টন পরিমাণ রূপো দান করেছিলেন| 72 সব মিলিয়ে অন্যান্য ব্যক্তিরা 375 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা, 1 1/3 টন রূপা এবং যাজকদের জন্য 67 টি বস্ত্রখণ্ড দিয়েছিলেন| 73 যাজকগণ, লেবীয়রা, দ্বাররক্ষীরা, গায়করা ও মন্দিরের সেবাদাসরা ও অন্যান্য সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা য়ে যার নিজের শহরে বাস করতে লাগল| ওই বছরের সপ্তম মাসের মধ্যেই দেখা গেল ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দারা তাদের নিজেদের বাসভূমিতে বসবাস শুরু করেছে|
1 শেষ পর্য়ন্ত বছরের সপ্তম মাসে ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা এক জায়গায় জড়ো হল| এরা সকলে একই উদ্দেশ্য নিয়ে একত্রে এসেছিল য়েন জলদ্বারের সামনে খোলা চত্বরে তারা ছিল একটি মানুষ| এরা সকলে মিলে শিক্ষক ইষ্রাকে মোশির বিধিপুস্তকটি আনতে অনুরোধ করল| উল্লেখ্য প্রভু ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের জন্য য়ে বিধিনির্দেশগুলি দেন তা এই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ ছিল| 2 সকলের অনুরোধে ইষ্রা জনসমক্ষে বিধিপুস্তকটি বের করলেন| এটি ছিল সপ্তম মাসের প্রথম দিন; ঐ জনসমাগমে ছিল পুরুষ, মহিলা এবং ঈশ্বরের বিধি শোনা ও বোঝার মত বযস হয়েছে এমন ব্যক্তিরা| 3 ইষ্রা তখন জলদ্বারের সামনের খোলা চত্বরের দিকে মুখ করে জোর গলায ভোর থেকে শুরু করে দুপুর পর্য়ন্ত বিধিপুস্তকটি পাঠ করে শোনালেন| উপস্থিত সকলেই পূর্ণ মনোযোগ সহকারে তা শুনল| 4 ইষ্রা একটি উঁচু কাঠের মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে এগুলি পাঠ করছিলেন| পাটাতনটি এই উপলক্ষেই বিশেষভাবে বানানো হয়েছিল| ইষ্রার ডানদিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন মত্তিথিয়, শেমা, অনায়, ঊরিয়, হিল্কিয় ও মাসেয় এবং তাঁর বাঁদিকে ছিলেন পদায়, মীশায়েল, মল্কিয়, হশুম, হশবদ্দানা, সখরিয় ও মশুল্লম| 5 য়েহেতু ইষ্রা উঁচু পাটাতনের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন সকলেই তাঁকে দেখতে পাচ্ছিল| তিনি বিধিপুস্তকটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে সমবেত সকলে উঠে দাঁড়াল| 6 প্রথমে ইষ্রা প্রভু, মহান ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন| তখন উপস্থিত সবাই হাত তুলে বলল, “আমেন, আমেন|” তারপর মাথা নীচু করে হাঁটু মুড়ে বসে প্রভুর প্রশংসা করল| 7 ঐসব লেবীয়রা ছিলেন য়েশূয়, বানি, শেরেবিয়, যামীন, অক্কুব, শব্বথয়, হোদিয়, মাসেয়, কলীট, অসরীয, য়োষাবদ, হানন এবং পলায| তাঁরা বিধিপুস্তকটি থেকে পাঠ করলেন এবং সহজ ভাষায় সেটি লোকদের বুঝিয়ে দিলেন যাতে যা পড়া হল তারা তার অর্থ বুঝতে পারে| 8 9 এরপর শাসক নহিমিয়, যাজক ও শিক্ষক ইষ্রা এবং য়ে সব লেবীয়রা শিক্ষাদান করছিলেন তাঁরা সকলে বক্তব্য রাখলেন| তাঁরা বললেন, “আজকের দিনটি তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের পক্ষে একটি বিশেষ দিন|আজ য়েন কেউ মন খারাপ না করে বা চোখের জল না ফেলে|” তাঁদের একথা বলার কারণ হল য়ে: যখন তাঁরা ঈশ্বরের বিধিপুস্তকটি পড়ে শোনাচ্ছিলেন তখন অনেকেই কাঁদছিল| 10 নহিমিয় বললেন, “যাও তোমরা সকলে মশলাদার ভারী খাদ্য ও সুমিষ্ট পানীয়গুলি উপভোগ করো| আজকের দিনটি প্রভুর কাছে একটি বিশেষ দিন বলে যারা রান্না করেনি তাদেরও খাবার দিও| মন খারাপ করো না কারণ প্রভুর আনন্দ তোমাদের মনকে শক্তিশালী করবে|” 11 লেবীয়বর্গরা লোকদের শান্ত হতে সাহায্য করল| তারা বলল, “চুপ কর এবং শান্ত হও| আজ একটি বিশেষ দিন| মন খারাপ কর না|” 12 তখন উপস্থিত সবাই মিলে বিশেষ ভোজসভায় য়োগ দিয়ে খাবার ও পানীয় ভাগ করে খেল| প্রত্যেকেই খুব খুশী ছিল এবং সকলে মিলে এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করল| শেষ পর্য়ন্ত শিক্ষকরা তাদের সকলকে প্রভুর য়ে সমস্ত বিধিগুলি বোঝানোর চেষ্টা করছিল তা বুঝতে পারল| 13 তারপর ঐ একই মাসের দ্বিতীয় দিনে প্রত্যেকটি পরিবার প্রধান ইষ্রা, যাজকবর্গ ও লেবীয়দের সঙ্গে দেখা করতে গেল| সকলেই বিধিগুলি সম্পর্কে পড়াশোনা করার জন্য ইষ্রাকে ঘিরে ধরল| 14 বিধিগুলি পড়াশোনা করার পর তারা, মোশির মাধ্যমে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের, বছরের সপ্তম মাসে কুটির থেকে য়ে একটি উত্সব পালন করবার আজ্ঞা দিয়েছিলেন, তা জানতে পারল| জেরুশালেমে ফেরবার পথে, তারা বিভিন্ন শহরের মধ্যে দিয়ে য়েতে য়েতে, লোকদের বলবে: “পর্বত থেকে জলপাই, গুলমেঁদি ও খর্জুর এবং ছায়া শাখাগুলি কাট| বিধিটিতে য়েমন বলা আছে ঐ শাখাগুলি ব্যবহার করে পর্ব পালন করবার জন্য অস্থায়ী কুটির তৈরী কর|” বিধিতে য়েমন বলা আছে তেমন ভাবে কর| 15 16 একথা শোনার পর লোকরা গিয়ে এই সব গাছের শাখা সংগ্রহ করে নিজেরা নিজেদের জন্য অস্থায়ী কুটির বানালো| তারা তাদের বাড়ির ছাদে, উঠোনে, মন্দির প্রাঙ্গনে, জলদ্বারের কাছে ও ইফ্রয়িম-দ্বারের কাছে উন্মুক্ত স্থানে কুটিরগুলি বানালো| 17 বন্দীদশা থেকে ইস্রায়েলে ফিরে আসা সমস্ত ব্যক্তিরাই এই কুটিরগুলি বানিয়ে তাতে বাস করল| নূনের পুত্র যিহোশূয়ের সময় থেকে সেই দিন পর্য়ন্ত ইস্রায়েলীয়রা এরকম ভাবে ও এত আনন্দ করে কুটির পর্ব পালন করে নি! 18 পর্বের প্রত্যেকদিন, প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্য্য়ন্ত রোজ ইষ্রা এদের কাছে বিধিপুস্তক পাঠ করে শোনালেন| বিধি অনুসারে ইস্রায়েলের বাসিন্দারা সাতদিন ধরে পর্ব পালন করার পর, অষ্টম দিনের দিন একটি বিশেষ সভার জন্য মিলিত হল|
1 ঐ মাসেরই 24 দিনের মাথায় ইস্রায়েলীয়রা উপবাসের জন্য জড়ো হল| সে সময় সকলে দুঃখ প্রকাশের জন্য চটের পোশাক পরা ছাড়াও মাথায় ছাই লাগিয়েছিল| 2 ইস্রায়েলের আদি বাসিন্দারা বিদেশীদের থেকে নিজেদের আলাদা রেখেছিল| তারা সকলে মন্দিরে দাঁড়িয়ে তাদের ও তাদের পূর্বপুরুষদের পাপ স্বীকার করল| 3 তারা সেখানে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে প্রভু, তাদের ঈশ্বরের বিধিপুস্তক পাঠ করল| তারপর আরো তিন ঘন্টা প্রভু তাদের ঈশ্বরকে প্রার্থনা করবার জন্য এবং পাপ স্বীকার করবার জন্য মাথা নীচু করে রইল| 4 তারপর এই সব লেবীয়রা সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে রইল: য়েশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, শবনিয়, বুন্নি, শেরেবিয়, বানি, কনানী| তারা উচ্চস্বরে তাদের প্রভু, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে লাগল| 5 এরপর য়েশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, বুন্নি, হশব্নির, শেরেবিয়, হোদিয়, শবনিয়, পথাহিয় প্রমুখ লেবীয়রা বলল, ‘উঠে দাঁড়াও এবং তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর!”ঈশ্বর সর্বদা ছিলেন! এবং তিনি চির দিন থাকবেনও! মানবজাতি তোমার মহান নামের প্রশংসা করুক! তোমার নাম সব কিছুর ঊর্দ্ধে উঠুক এবং বন্দিত হোক! 6 হে প্রভু, এক মাত্র তুমিই ঈশ্বর! তুমিই সেই জন, য়ে আকাশ তৈরী করেছে! তুমিই মহান স্বর্গ আর মর্ত্যে যা কিছু আছে সে সব, পৃথিবী আর অভ্য়ন্তরস্থ সব কিছু আর সমুদ্র মধ্যস্থিত সব কিছু সৃষ্টি করেছ| সবেতে তুমিই দিয়েছো জীবনের ছোঁয়া এবং সমস্ত স্বর্গীয় দেবদূতরা নত হয়ে তোমার উপাসনা করে! 7 হে প্রভু, তুমিই আমাদের ঈশ্বর| তুমিই সেই জন য়ে অব্রামকে মনোনীত করে বাবিলের ঊর থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলে এবং তার নাম বদলে অব্রাহাম রেখেছিলে| 8 তুমিই তার আনুগত্য এবং সততা লক্ষ্য করেছ| তুমিই সেই জন য়ে তার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলে এবং তাকে ও তার উত্তরপুরুষদের কনানীয, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, যিবূষীয় এবং গির্গাশীযদের জমিগুলি দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে| তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি রেখেছো কারণ তুমি ভাল| 9 তুমি মিশরে আমাদের পূর্বপুরুষদের দুর্গতি দেখেছিলে ও লোহিত সাগর থেকে তাদের এন্দন শুনেছিলে| 10 তুমি ফরৌণে তার আধিকারিকদের ও তার লোকদের কাছে নানা চিহ্ন ও অদ্ভুত কার্য়্য় দেখিয়েছিলে| তুমি জানতে য়ে, মিশরীযরা নিজেদের আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকে শ্রেষ্ঠতর ভাবত| কিন্তু তুমি প্রমাণ করলে, তুমি কত মহান! আজ পর্য়ন্ত তারা তা স্মরণ করে| 11 তুমি তাদের চোখের সামনে লোহিত সাগরকে দ্বিখণ্ডিত করলে আর শুকনো জমির ওপর দিয়ে হেঁটে গেলে কিন্তু তুমি তাড়া করে আসা শএুদের সমুদ্র ফেলে দিলে| তারা পাথরের মতো সমুদ্রে ডুবে গেল| 12 একটি উঁচু মেঘ দিয়ে দিনের বেলা তুমি তাদের পথ দেখালে| রাতের বেলা, একটি আলোকস্তম্ভ দিয়ে তুমি তাদের পথ দেখালে| তুমি তাদের দেখালে কোথায য়েতে হবে| 13 এরপর সীনয় পর্বতে স্বর্গের চূড়া থেকে তুমি বয়ং কথা বলে তাদের দিলে প্রকৃত শিক্ষা, যা ভালো; তুমি তাদের বিধিসমূহ ও আজ্ঞা দিলে য়েগুলি ভালো| 14 তুমি তোমার দাস, মোশির মাধ্যমে তোমার পবিত্র বিশ্রামের দিনের কথা তাদের জানালে| তুমি তাদের আজ্ঞা, বিধিসমূহ এবং শিক্ষামালা দিলে| 15 ওরা সকলে ক্ষুধার্ত ছিল, তাই তুমি স্বর্গ থেকে সবাইকে খাবার দিলে| ওরা সকলে তৃষ্ণার্ত ছিল, তাই তুমি পাথর থেকে সবাইকে জল দিলে| তারপর তুমি ওদের য়েতে বললে ও প্রতিশ্রুত ভূমি দখল করতে বললে| তোমার ক্ষমতা দিয়ে তুমি সেই ভূখণ্ড অন্যদের কাছ থেকে নিয়েছিলে| 16 কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা গর্বোদ্ধত ও জেদী হল এবং তোমার আজ্ঞা লঙঘন করল| 17 তারা শুনতে অস্বীকার করল| তুমি য়ে আশ্চর্য়্য় জিনিষগুলি তাদের জন্য করেছিলে তা তারা ভুলে গেল| তাদের জেদের কারণে তারা আবার এীতদাস হয়ে মিশরে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিল| কিন্তু তুমি দয়ালু ঈশ্বর! ক্ষমা, করুণা, ধৈর্য়্য় ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ তোমার হৃদয়| তাই তুমি তাদের পরিত্যাগ করনি| 18 এমনকি যখন তারা সোনার বাছুরের মূর্ত্তি বানিয়ে বলেছে, ‘এই মূর্ত্তিগুলোই আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছে,’ তখনও তুমি তাদের বাতিল কর নি| 19 কিন্তু তোমার মহান করুণার জন্য তুমি ওদের মরুভূমিতে পরিত্যাগ করনি| তুমি দিনের বেলা উঁচু মেঘটিকে সরিয়ে নাওনি, রাতেও আগুনের স্তম্ভটি সরিয়ে নাওনি| তুমি তোমার পবিত্র আলো দিয়ে তাদের পথ আলোকিত করা এবং তাদের পথ দেখিয়ে চলা অব্যাহত রেখেছ| 20 তুমি তাদের বিচক্ষণ করে তোলার জন্য তোমারই ভাল আত্মা দিয়েছ| খাদ্য হিসেবে তুমি ওদের মান্না দিয়েছ এবং জল দিয়েছ তাদের তৃষ্ণা মেটাতে| 21 তুমি 40 বছর ধরে এদের প্রতিপালন করেছো| তুমি মরুভূমিতে যা কিছু প্রয়োজন ছিল তা দিয়েছো| ওদের পোশাকগুলি ছিঁড়ে যায়নি| ওদের পা ফুলে যায়নি| 22 হে প্রভু, তুমি ওদের রাজত্ব, জাতি এবং বহু দূরের জায়গাগুলি যেখানে অল্প কিছু লোক বাস করত, তা দিয়েছ| তুমি ওদের সীহোনের ভূখণ্ড, হিষ্বোণের রাজা, ওগের ভূখণ্ড এবং বাশনের রাজা দিয়েছিলে| 23 তুমি আকাশের নক্ষত্রের মতো ওদের উত্তরপুরুষদের সংখ্যায় বাড়িয়েছো| তুমি তাদের সেই ভুখণ্ডে বাস করতে নিয়ে গিয়েছ যা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুত ছিল| 24 তারা এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করল এবং কনানীয়দের পরাজিত করে সেটি অধিকার করল| তুমি তাদের দিয়ে ঐসব লোকদের পরাজিত করিযেছিলে| ঐসব জাতি, তাদের রাজা এবং ঐসব লোকের প্রতি তারা যা করতে চেযেছিল, তুমিই তাদের দিয়ে তাই করিয়েছিলে| 25 তারা শক্তিশালী নগরগুলি এবং উর্বর জমি দখল করল| তারা ভালো ভালো জিনিষে পরিপূর্ণ বাড়ীগুলি অধিকার করল| ইতিমধ্যেই য়ে সব কূপগুলি খনন হয়েছিল সেগুলি, দ্রাক্ষাক্ষেত, জলপাই গাছ এবং অনেক ফলের গাছসমূহ তারা পেয়েছিল| তারা খেল এবং তৃপ্ত হল| তুমি তাদের য়ে ভাল জিনিসগুলি দিয়েছিলে সেগুলি তারা উপভোগ করেছিল| 26 তারা তোমার বিরুদ্ধে গেল এবং তোমার শিক্ষামালা ছুঁড়ে ফেলে দিল| তারা তোমার ভাব্বাদীদেরও হত্যা করল, যারা তাদের সতর্ক করে তোমার কাছে ফেরাতে চেয়েছিল| কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে বীভত্স সব কাজ করলো| 27 তাই তুমি তাদের শএুদের হাতে ওদের পরাজিত হতে দিলে| শএুরা তাদের নানান সংকটের মধ্যে ফেললো| তাই বিপদের সময়ে তারা তোমার সাহায়্য়ের জন্য কেঁদে পড়ল| স্বর্গে বসে তুমি তাদের আর্ত চিত্কার শুনলে| তুমি করুণাময, তাই লোক পাঠালে তাদের পরিত্রাণের জন্য| তারা এসে শএুদের হাত থেকে ওদের উদ্ধার করলো| 28 কিন্তু য়ে মূহুর্তে আমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের শএুদের হাত থেকে মুক্তি পেল, তারা পাপ কার্য়্য় শুরু করলো| তাই তুমি তাদের শএুদের পরাজিত করতে এবং তাদের ওপর নিষ্ঠুর ভাবে শাসন করতে দিলে| তারা তোমার সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করল| স্বর্গে তুমি তাদের কান্না শুনলে এবং তোমার করুণাবশতঃ আবার তাদের উদ্ধার করলে| এ ঘটনা বহুবার ঘটেছে| 29 তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে, যাতে তারা তোমার শিক্ষামালার শরণ নেয়, কিন্তু ওরা উদ্ধত ছিল এবং তোমার আজ্ঞাসমূহ মানতে অস্বীকার করেছিল| তারা তোমার বিধিসমূহ, য়ে সেগুলো পালন করে তাকে সত্য জীবন দেয়, তা ভেঙ্গেছিল| কিন্তু তারা তাদের জেদবশতঃ তোমার বিধিসমূহ ভেঙ্গেছিল| তারা তোমার দিকে পেছন ফিরে ছিল এবং শুনতে অস্বীকার করেছিল| 30 তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি বহু বছর ধরে খুব ধৈর্য়্য়শীল ছিলে, তোমার আত্মায় পূর্ণ তোমার ভাব্বাদীদের মাধ্যমে তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে| কিন্তু তারা শুনতে অস্বীকার করেছিল, তাই তুমি তাদের বিজাতীয়দের হাতে তুলে দিয়েছিলে| 31 কত দরদী এবং করুণাময় ঈশ্বর তুমি| তবুও তুমি তাদের ধ্বংস করোনি, ছেড়েও যাওনি| তুমি দয়াময়, করুণাধর ঈশ্বর! 32 হে আমাদের ঈশ্বর, তুমি মহান! ভয়ঙ্কর এবং ক্ষমতাশালী ঈশ্বর! তুমি দয়ালু ও বিশ্বস্ত| তুমি সবসময় তোমার চুক্তি বজায় রাখো! আমাদের অনেক সমস্যা ছিল| সে সবই তোমার কাছে জরুরী! আমাদের লোকদের নানান সঙ্কটে পড়তে হয়েছিল| আমাদের যাজকগণ ও ভাব্বাদীগণ সংকটে ছিল| অশূরের রাজাদের রাজত্বের সময় থেকে আজ পর্য়ন্ত বহু ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেছে| 33 কিন্তু হে আমাদের প্রভু, আমাদের প্রতি যা কিছু ঘটছে তাতে তুমি ছিলে ন্যায়সঙ্গত| হ্যাঁ, আমরাই ভুল করেছি! 34 আমাদের রাজারা, নেতারা, যাজকরা ও পূর্বপুরুষরা তোমার আদেশগুলি মানেনি| তারা তোমার সাবধানবাণী অবজ্ঞা করে নির্দেশ অমান্য করেছে| 35 আমাদের পূর্বপুরুষরা, তুমি তাদের য়ে বিশাল উর্বর জমি দিয়েছিলে তা উপভোগ করেছিল| কিন্তু তারা তোমার সেবা করেনি বা তাদের পাপাচরণ থেকে সরে আসেনি| 36 এখন আমরা এই ভূখণ্ডে এীতদাস| য়ে ভূখণ্ড তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে, যাতে তারা সেখানকার ফলমূল ও যা কিছু সুন্দর জিনিস ভোগ করতে পারে, সেখানেই আমরা ক্রীতদাস| 37 এই জমিতে বহু ফসল ফলত, কিন্তু সমস্ত ফসল যায় রাজার কাছে| এই জমির মহতী ফসল যায় রাজাদের কাছে যাদের তুমি আমাদের পাপাচরণের জন্য আমাদের ওপর শাসন করতে নিযুক্ত করেছ| ঐসব রাজারা আমাদের শাসন করে, আমাদের গবাদি পশু তারা নিয়ন্ত্রণ করে এবং তারা তাদের যা ইচ্ছে তাই করে| সত্যিই, আমাদের পক্ষে তা একটা দুর্ভোগ| 38 এসব কারণেই, আমাদের নেতারা, লেবীয়রা এবং যাজকগণ তোমার সঙ্গে চুক্তিটি করেছিল য়েটা বদলানো যায় না| আমরা যা প্রতিজ্ঞা করছি লিখে তাতে স্বাক্ষর করছে আমাদের নেতারা, লেবীয়রা ও যাজকরা আর সেই চুক্তিপত্র শীলমোহর করে রাখছি|
1 চুক্তিটি যারা শীলমোহর করেছিলেন তাঁরা হলেন: হখলিয়ের পুত্র রাজ্যপাল নহিমিয়, 2 আর যাজকদের মধ্যে সিদিকিয়, 3 সরায, অসরিয়, যিরমিয়, পশ্হূর, অমরিয়, মল্কিয়, 4 হটূশ, শবনিয়, মল্লূক, 5 হারীম, মরেমোত্, ওবদিয়, 6 দানিয়েল, গিন্নথোন, বারূক, 7 মশুল্লম, অবিয়, মিয়ামীন, 8 মাসিয়, বিল্গয় এবং শময়িয়| এঁরাই হলেন সেই যাজকগণ যাঁরা চুক্তিটি সই করেছিলেন| 9 নিম্নলিখিত লেবীয়রা চুক্তিটি শীলমোহর করেছিলেন: অসনিয়ের পুত্র য়েশূয়, হেনাদদ পরিবারের বিন্নুয়ী, কদ্মীয়েল 10 এবং তাঁর ভাইদের মধ্যে শবনিয়, হোদিয়, কলীট, পলায়, হানন, 11 মীখা, রহোব, হশবিয়, 12 সক্কূর, শেরেবিয়, শবনিয়, 13 হোদীয়, বানি এবং বনীনু| 14 নেতারা যাঁরা সই করেছিলেন তাঁরা হলেন: পরোশ, পহত্-মোয়াব, এলম, সত্তূ, বানি, 15 বুন্নি, অস্গদ, ব্বেয, 16 অদোনিয়, বিগ্বয়, আদীন, 17 আটের, হিষ্কিয়, অসূর, 18 হোদিয়, হশুম, বেত্সয়, 19 হারীফ, অনাথোত্, নবয়, 20 মগ্পীযশ, মশুল্লম, হেষীর, 21 মশেষবেল, সাদোক, য়দ্দুয, 22 পলটিয়, হানন, অনায়, 23 হোশেয়, হনানিয়, হশূব, 24 হলোহেশ, পিল্হ, শোবেক, 25 রহূম, হশব্না, মাসেয, 26 অহিয, হানন, অনান, 27 মল্লূক, হারীম ও বানা| 28 এছাড়াও অবশিষ্ট সমস্ত বাসিন্দা, যাজকগণ, লেবীয়বর্গ, দ্বাররক্ষীরা ও গায়করা সকলে, যারা অন্যান্য ভিন্দেশী জাতিদের থেকে নিজেদের আলাদা রেখেছিল এবং তাদের স্ত্রী-ছেলেমেয়ে, যেখানে যত জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন লোক আছে তারা সকলে মিলে একসঙ্গে প্রতিশ্রুতি করল য়ে মোশির মাধ্যমে প্রভু, আমাদের ঈশ্বর তাদের জন্য য়ে বিধি পাঠিয়েছেন- সেই সমস্ত শিক্ষা ও নির্দেশ তারা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে এবং তারা ঈশ্বরের বিধিসমূহ পালন না করলে তারা সেই অভিশাপটি গ্রহণ করবে যার থেকে তাদের অমঙ্গল হবে| 29 30 “আমরা প্রতিশ্রুতি করছি, আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের আশেপাশের সমগোত্রীয়দের সঙ্গে বিয়ে হতে দেব না| 31 “আমরা প্রতিশ্রুতি করছি য়ে বিশ্রামের দিন আমরা কোন কাজ করব না| সেই বিশ্রামের দিনে যদি আমাদের আশেপাশের কেউ আমাদের কাছে কিছু বিক্রি করতে আসে, আমরা তাদের কাছ থেকে কোন জিনিস কিনবো না| এছাড়া প্রতি সপ্তম বছরে আমরা জমিতে কোন কাজ করব না, নিস্ফলা রাখব এবং আমাদের কাছে যার যা ধার্য় কর আছে তা আর আদায় করব না| 32 “এছাড়াও, আমরা মন্দিরের দেখাশোনা করব এবং আমাদের ঈশ্বরকে সম্মানিত করবার জন্য, মন্দিরের সেবা কাজে সাহায়্য়ের জন্য প্রতি বছর 1,3 শেকেল রৌপ্য আমরা দেব| 33 এই অর্থ মন্দিরে টেবিলের ওপর যাজকরা য়ে বিশেষ রুটি রাখেন তার জন্য, প্রতিদিনের শস্য নৈবেদ্য ও হোমবলির জন্য, বিশ্রামের দিনের নৈবেদ্যর জন্য, অমাবস্যার উত্সবগুলির জন্য, অন্যান্য বিশেষ সভাসমূহের জন্য, পবিত্র নৈবেদ্যগুলির জন্য, পাপস্খালনের নৈবেদ্যর জন্য যা ইস্রায়েলীয়দের শুদ্ধ করে এবং আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরের অন্য য়ে কোন খরচের জন্য ব্যবহৃত হবে| 34 বিধিপুস্তকের লেখা অনুসারে আমরা যাজকগণ, লেবীয়রা এবং লোকরা ঘুঁটি চেলে ঠিক করেছি বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোন পরিবার আমাদের প্রভু ঈশ্বরের মন্দিরের বেদীর ওপর পোড়ানোর জন্য জ্বালানী কাঠ দান করবে| 35 “এছাড়াও আমরা প্রতি বছর প্রতিটি ক্ষেত থেকে নবান্নের প্রথম ফসল ও গাছের প্রথম ফলটি প্রভুর মন্দিরে আনার দায়িত্ব গ্রহণ করলাম| 36 “বিধিতে য়েমন লেখা আছে, আমরা আমাদের প্রথম জাত পুত্র, আমাদের প্রথম জাত গরু-মেষ এবং ছাগলগুলি ঈশ্বরের মন্দিরে আনব এবং সেখানে সেবায নিযুক্ত যাজকদের সেগুলি দেব| 37 “আমরা এই জিনিষগুলিও প্রভুর মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরে আনব এবং সেগুলি যাজকদের দেব: আমাদের প্রথম ময়দার তাল, আমাদের প্রথম শস্য নৈবেদ্য, আমাদের প্রথম গাছগুলি, নতুন দ্রাক্ষারস এবং তেল| এবং আমরা যেখানে কাজ করি সেই শহরে লেবীয়রা যখন সংগ্রহ করতে আসে তখন আমরা তাদের জন্য আমাদের ফসলের এক দশমাংশ নিয়ে আসব| 38 যখন তারা এই ফসল গ্রহণ করবে তখন হারোণ পরিবারের একজন যাজক লেবীয়দের সঙ্গে থাকবে| লেবীয়রা এইসমস্ত ফসল আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরে এনে মন্দিরের গোলাঘরের মধ্যে রেখে দেবে| 39 তারা তাদের শস্য, দ্রাক্ষারস, তেল প্রভৃতি উপহার সামগ্রী মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরে যেখানে যাজকরা কাজের জন্য থাকেন সেখানে অবশ্যই আনবে| এছাড়াও গায়কবর্গ ও দ্বাররক্ষীরা সেখানে থাকবে|“আমরা সকলে প্রতিজ্ঞা করলাম আমাদের ঈশ্বরের মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ করব!”
1 অতঃপর ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের নেতারা জেরুশালেম শহরে চলে এলেন| ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের এবার ভাবতে হবে আর কারা কারা এ শহরে থাকবে| তাই তারা ঘুঁটি চেলে ঠিক করল প্রতি দশজনে একজন করে ব্যক্তিকে এই পবিত্র শহরে থাকতেই হবে| অপর ন’জন ইচ্ছে করলে তাদের নিজেদের শহরে থাকতে পারে| 2 কিছু ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসে জেরুশালেমে থাকতে রাজী হল| অন্য লোকরা তাদের ধন্যবাদ জানালো এবং আশীর্বাদ করল| 3 প্রাদেশিক শাসনকর্তারা জেরুশালেমে থাকলেন| (ইস্রায়েলের কিছু লোক, যাজকগণ, লেবীয়রা ও শলোমনের ভৃত্যদের বংশধররা যিহূদাতে থাকলেন| এরা প্রত্যেকেই বিভিন্ন শহরে নিজস্ব জমিতে বাস করতে লাগলেন| 4 যিহূদার অন্যান্য ব্যক্তিরা ও বিন্যামীনের পরিবারের লোকজনরা জেরুশালেম শহরেই বসতি স্থাপন করল|)যিহূদার উত্তরপুরুষদের মধ্যে যাঁরা জেরুশালেমে এলেন তাঁরা হলেন: উষিযের পুত্র অথায় (উষিয় ছিলেন সখরিয়র পুত্র; সখরিয় ছিলেন অমরিযের পুত্র; অমরিয় ছিলেন শফটিয়ের পুত্র; শফটিয় ছিলেন মহললেলের পুত্র; মহললেল ছিলেন পেরসের উত্তরপুরুষ|) 5 এবং বারূকের পুত্র মাসেয়| (বারূক ছিলেন কল্হোষির পুত্র; কল্হোষি ছিলেন হসায়ের পুত্র; হসায় ছিলেন অদায়ার পুত্র; অদাযা ছিলেন য়োযারীবের পুত্র; য়োয়ারীব ছিলেন সখরিয়ের পুত্র; সখরিয় ছিলেন শেলার উত্তরপুরুষ|) 6 সব মিলিয়ে জেরুশালেমে পেরস বংশের 468 জন সাহসী উত্তরপুরুষ বাস করতেন| 7 বিন্যামীনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়াঁরা জেরুশা-লেমে এলেন তাঁরা হলেন: মশুল্লমের পুত্র সল্লূ| (মশুল্লম ছিলেন য়োযেদের পুত্র; য়োযেদ ছিলেন পদাযের পুত্র; পদায ছিলেন কোলায়ার পুত্র; কোলায়া ছিলেন মাসেয়ের পুত্র; মাসেয় ছিলেন ঈথীয়েলের পুত্র; ঈথীয়েল ছিলেন য়িশাযাহের পুত্র|) 8 এবং য়িশাযাহকে যারা অনুসরণ করেছিলেন তাঁরা হলেন গব্বয এবং সল্লয| সব মিলিযে সেখানে 928 জন পুরুষ ছিল| 9 এরা শিখ্রির পুত্র য়োয়েলের তত্ত্বাবধানে ছিলেন| আর হস্সনূযার পুত্র যিহূদা, জেরুশালেমের দ্বিতীয় জেলার দায়িত্বে ছিলেন| 10 যাজকদের মধ্যে জেরুশালেমে গেলেন: য়োযারীবের পুত্র য়িদযিয, যাখীন, 11 হিল্কিয়ের পুত্র সরায়| হিল্কিয় ছিলেন মশুল্লমের পুত্র ও সাদোকের পৌত্র, সাদোক আবার ঈশ্বরের মন্দিরের তত্ত্বাবধায়কের পুত্র অহীটুবের সন্তান মরাযোতের নিজের পুত্র| 12 এবং তাদের ভাইদের 822 জন যারা মন্দিরের জন্য কাজ করেছিল, ভাইরা ও য়িরোহমের পুত্র অদায়া| (য়িরোহম ছিলেন পললিযের পুত্র; পললিয ছিলেন অম্সির পুত্র; অম্সি ছিলেন সখরিয়ের পুত্র| সখরিয় ছিলেন পশ্হূরের পুত্র; পশ্হূর ছিলেন মল্কিয়ের পুত্র|) 13 এবং 242 জন পুরুষ যারা মল্কিযের ভাইরা| (এই পুরুষেরা ছিলেন তাঁদের পরিবারের নেতৃগণ| এঁরা ছিলেন: অসরেলের পুত্র অমশয; অসরেল ছিলেন অহসযের পুত্র; অহসয ছিলেন মশিল্লেমোতের পুত্র; মশিল্লেমোত্ ছিলেন ইম্মেরের পুত্র|) 14 এঁদের সঙ্গে গেলেন ইম্মেরের আরো 128 জন ভাই| (যারা সকলেই একেক জন সাহসী সৈনিক| এই দলটির পরিচালনার কর্তৃত্ব ছিল হগ্গদোলীমের পুত্র সব্দীযেল|) 15 লেবীয়দের মধ্যে য়াঁরা জেরুশালেমে গেলেন তাঁরা হলেন: হশূবের পুত্র শিময়িয়| (হশূব ছিলেন অস্রীকামের পুত্র; অস্রীকাম ছিলেন হশবিযর পুত্র; হশবিয ছিলেন বুন্নির পুত্র| 16 লেবীয়দের দুই নেতা শব্বথয় ও য়োষাবাদ; বর্হিবিভাগের উঠোনের কাজের জন্য ভারপ্রাপ্ত ছিলেন; 17 মীখার পুত্র মত্তনিয়, (মীখা ছিলেন সব্দির পুত্র, সব্দি ছিলেন প্রশস্তি ও প্রার্থনা সঙ্গীত দলের পরিচালক আসফের পুত্র|) এবং বক্বুকিয য়ে ছিল তার ভাইদের ভারপ্রাপ্তদের মধ্যে দ্বিতীয় এবং শম্মুয়ের পুত্র অব্দ; শম্মুয ছিলেন গাললের পুত্র| গালল ছিলেন যিদূথূনের পুত্র| 18 সব মিলিয়ে মোট 284 জন লেবীয় পবিত্র শহর জেরুশালেমে গেলেন| 19 দ্বাররক্ষীদের মধ্যে অক্কুব, টল্মোন ও তাদের 172 জন ভাই জেরুশালেমে যান| এঁরা শহরের দরজাগুলির দিকে খেযাল রাখতেন ও পাহারা দিতেন| 20 ইস্রায়েলের অন্য বাসিন্দারা, যাজক ও লেবীয়রা যিহূদাতে, তাঁদের পূর্বপুরুষদের জমিতেই বাস করতেন| 21 সীহ এবং গীষ্প ছিল মন্দিরের দাসদের নেতা যারা ওফল পাহাড়ের ওপর থাকত| 22 আর উষি ছিলেন জেরুশালেমের লেবীয়দের আধিকারিক| (উষি ছিলেন বানির পুত্র| বানি ছিলেন হশবিয়ের পুত্র; হশবিয ছিলেন মত্তনীযর পুত্র; মত্তনীয ছিলেন মীখার পুত্র|) উষি ছিলেন আসফের একজন উত্তরপুরুষ| আসফের উত্তরপুরুষরা ছিলেন ঈশ্বরের মন্দিরের সেবাযেত্ গায়কবর্গ| 23 রাজা দায়ূদ গায়কদের কাজকর্মের আদেশ ও নির্দেশ দিয়েছিলেন| 24 মশেষবেলের পুত্র পথাহিয লোকদের কাছে রাজার কাছ থেকে খবর নিয়ে আসত| (পথাহিয ছিল সেরহের একজন উত্তরপুরুষ| সেরহ ছিল যিহূদার পুত্র|) 25 যিহূদার লোকরা কিরিযত্-অর্ব্ব এবং তার চারপাশের ছোট শহরগুলিতে, দীবোন এবং তার চারপাশের য়েশূয, মোলাদাত, বৈত্পেলটে, হত্সর-শুযালে, বের্-শেবা এবং সিক্লগের ছোট শহরগুলিতে, য়িকব্সেল ও তার চারপাশের ছোট শহরগুলিতে, এবং মকোনা এবং ঐন্-রিম্মোণে, সরায, য়ম্মু এবং সানোহ, অদুল্লম, লাখীশ, অসেকা এবং তার চারপাশের সমস্ত ছোট শহরগুলিতে থাকত| সুতরাং যিহূদার লোকরা বের্-শেবা থেকে হিন্নোম উপত্যকা পর্য়্য়ন্ত সমস্ত পথ জুড়ে বাস করত| 26 27 28 29 30 31 গেবা থেকে বিন্যামীন পরিবারের উত্তরপুরুষরা মিক্মস, অয়াত, বৈথেল এবং তার চারপাশের ছোট শহরগুলিতে থাকতেন| 32 অনাথোত, নোবে, অননিয়া, 33 হাত্সার, রামা, গিত্তয়িম, 34 হাদীদ, সবোয়িম, নবল্লাট, 35 লোদ, ওনো এবং কারিগরদের উপত্যকায় বাস করত| 36 যিহূদায় বসবাসকারী লেবীয় পরিবারের কিছু গোষ্ঠী বিন্যামীনের জমিতে উঠে এসেছিল|
1 সরায়, যিরমিয়, ইষ্রা, অমরিয়, মল্লুক, হটুশ, শখনিয়, রহূম, মরেমোত্, ইদ্দো, গিন্নথোয়, অরিয়, মিযামীন, মোয়াদিয, বিল্গা, শময়িয়, য়োয়ারীব, য়িদযিয, সল্লূ, আমোক, হিল্কিয়, য়িদযিয প্রমুখ যাজকেরা শল্টীয়েল ও য়েশূয়ের পুত্র সরুব্বাবিলের সঙ্গে যিহূদায় ফিরে এসেছিলেন| এঁরা সকলেই য়েশূয়র সময় যাজকদের নেতা ছিলেন বা নেতাদের আত্মীয় ছিলেন| 2 3 4 5 6 7 8 লেবীয়রা হলেন: য়েশূয়, বিন্নূয়ী, কদ্মীয়েল, শেরেবিয়, যিহূদা ও মত্তনিয়| এই পুরুষেরা এবং মত্তনিয়র আত্মীয়রা ঈশ্বরের প্রশংসা গীতের ভারপ্রাপ্ত ছিলেন| 9 লেবীয়দের দুই আত্মীয় বক্বুকিয় ও উন্নো কর্তব্যে থাকার সময় একে অপরের বিপরীত মুখে দাঁড়াতেন| 10 য়েশূয় ছিলেন য়োয়াকীমের পিতা, য়োয়াকীম ইলিয়াশীবের, ইলিয়াশীব য়োযাদার, 11 য়োয়াদা য়োনাথনের ও য়োনাথন য়দ্দূযের পিতা ছিলেন| 12 য়োয়াকীমের সময় যাজক পরিবারের নেতা ছিলেন নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা:সরায় পরিবারের নেতা ছিলেন মরায়| য়িরমিয় পরিবারের নেতা ছিলেন হনানিয়| 13 ইষ্রা পরিবারের প্রধান ছিলেন মশুল্লম, অমরিয় পরিবারের নেতা ছিলেন যিহোহানন| 14 মল্লূকীর পরিবারে নেতা ছিলেন য়োনাথন| শবনিয়ের পরিবারে নেতা ছিলেন য়োষেফ| 15 হারীমের পরিবারের নেতা ছিলেন অদ্ন| মরায়োতের পরিবারের নেতা ছিলেন হিল্কয়| 16 ইদ্দোর পরিবারের নেতা ছিলেন সখরিয়| গিন্নথোনের পরিবারের নেতা ছিলেন মশুল্লম| 17 অবিয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন সিখ্রি| মিনিয়ামীনের ও মোয়দিয়ের পরিবারগুলির নেতা ছিলেন পিলটয়| 18 বিল্গার পরিবারের নেতা ছিলেন সম্মুয়| শময়িয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন যিহোনাথন| 19 য়োয়ারীবের পরিবারের নেতা ছিলেন মত্তনয়| যিদয়িয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন উষি| 20 সল্লয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন কল্লয়| আমোকোর পরিবারের নেতা ছিলেন এবর| 21 হিল্কিয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন হশবিয়| নথনেল ছিলেন যিদয়িয় পরিবারের নেতা| 22 ইলিয়াশীব, ষোযাদার, য়োহানন ও য়দ্দূযের সময়ের লেবীয় ও যাজকদের পরিবারের নেতাদের নাম পারস্যরাজ দারিয়াবসের রাজত্বকালে নথিভুক্ত করা হয়েছিল| 23 ইলিয়াশীবের পুত্র য়োহাননের সময় পর্য়ন্ত লেবীয় উত্তরপুরুষদের পরিবার প্রধানের নাম ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে| 24 এরা হলেন হশবিয়, শেরেবিয়, কদ্মীয়েলের পুত্র য়েশূয় এবং তার ভাইরা| এরা সকলে প্রশংসাগীত গাইত এবং ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিত| এক দল অন্য দলের বিপরীত মুখে দাঁড়াত এবং অন্য দলের প্রশ্নের উত্তর দিত রাজা দায়ূদ দ্বারা য়েভাবে ওটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই অনুযায়ী| 25 মত্তনিয়, বক্বুকিয়, ওবদিয়, মশুল্লম, টল্মোন ও অক্কুব দরজার পাশের ভাঁড়ার ঘরগুলি পাহারা দিত| 26 য়েশূয়র পুত্র ও য়োসাদকের পৌত্র য়োয়াকীমের সময় এই সমস্ত দ্বাররক্ষীরা কাজ করেছে| নহিমিয়ের শাসনকালে এবং যাজক শিক্ষক ইষ্রার সময়ে এরা কাজে বহাল ছিল| 27 অতঃপর লোকরা জেরুশালেমের দেওয়ালটি উত্সর্গ করল| লেবীয়রা যেখানে থাকতেন সেখান থেকে দেওয়াল উত্সর্গ অনুষ্ঠানে য়োগ দিতে জেরুশালেমে এলেন| তাঁরা ঈশ্বরের প্রশংসাগান করতে ও তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে এসেছিলেন| তাঁরা এসে খোল, করতাল এবং বীণা প্রভৃতি বাদ্যয়ন্ত্র বাজালেন| 28 গায়করাও সকলে জেরুশালেমের আশেপাশের শহরগুলি থেকে উত্সবে য়োগ দিতে এসেছিলেন| তাঁরা নিজেদের বসবাসের জন্য জেরুশালেমের আশেপাশে ছোট শহর বানিয়ে ছিলেন| তাঁরা নটোফাত, বৈত্-গিল্গল, গেবা এবং অস্মাবত্ থেকে এসেছিলেন| 29 30 যাজকগণ ও লেবীয়রা প্রথমে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজেদের শুদ্ধ করলেন, তারপর লোকরা, ফটকসমূহ ও জেরুশালেমের প্রাচীরটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুদ্ধ করলেন| 31 আমি যিহূদার নেতাদের দেওয়ালের ওপরে উঠে দাঁড়াতে বললাম| এছাড়াও, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের জন্য বড় দু’টি গানের দলকে বেছে নিলাম| একটি দল ছিল দেওয়ালের ওপরে ডানদিকে ছাইগাদার ফটকের দিকে| 32 হোশযিয ও যিহূদার অর্ধেক নেতারা সেই গায়কদের অনুসরণ করলেন| 33 এছাড়াও তাঁদের সঙ্গে গেলেন অসরিয়, ইষ্রা, মশুল্লম, 34 যিহূদা, বিন্যামীন, শময়িয় ও যিরমিয়| 35 শিঙা নিয়ে কয়েক জন যাজকও তাদের সঙ্গে গেলেন| আর গেলেন সখরিয়| (সখরিয় ছিলেন য়োনাথনের পুত্র| এই য়োনাথন আবার শময়িয়র পুত্র, য়ে কিনা মত্তনিয়ের পুত্র| আর মত্তনিয হলেন, মীখার পুত্র, সক্কুরের পৌত্র ও আসফের পৌত্র|) 36 এদের মধ্যে ছিলেন আসফের ভাই শময়িয়, অসরেল, মিললয, গিললয, মাযয, নথনেল, যিহূদা এবং হনানি| তাঁদের সঙ্গে ছিল ঈশ্বরের দূত দায়ূদ নির্মিত সব বাদ্যয়ন্ত্র| শিক্ষক ইষ্রা দেওয়াল উত্সর্গীকরণ উত্সবে য়াঁরা জড়ো হয়েছিলেন তাঁদের নেতৃত্ব দিলেন| 37 তাঁরা যখন ঝর্ণা ফটকের কাছে এলেন, তাঁরা সোজা হাঁটলেন এবং দায়ূদ নগরী পর্য়ন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে গেলেন এবং তারপর তাঁরা জলদ্বারের দিকে গেলেন| 38 এদিকে গায়কদের অন্য দলটি বাঁদিকে রওনা হল| আমি ও বাকি অর্ধেক লোক তাদের পেছন পেছন গিয়ে দেওয়ালের চূড়োয পৌঁছলাম| তারা তুন্দুরের দুর্গ ছাড়িযে চওড়া দেওয়ালের দিকে গেল| 39 তারপর তারা এই ফটকগুলি দিয়ে গেল: ইফ্রয়িমের দ্বার, পুরানো দ্বার, মত্স্যদ্বার, হননেলের দুর্গ ও হম্মেযার একশতর দুর্গ| তারপর তারা মেষ দ্বারের কাছে পৌঁছোল| তারা রক্ষীদের দ্বারের কাছে গিয়ে থামল| 40 তারপর এই দুই গায়কের দল ঈশ্বরের মন্দিরে তাদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালো, আমিও নিজের জায়গায় এসে দাঁড়ালাম| তারপর আধিকারিকদের অর্ধেক তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে দাঁড়াল| 41 ইলীয়াকীম, মাসেয়, মিনিয়ামীন, মীখায়, ইলিযৈনয়, সখরিয় এবং হনানিয় ছিলেন যাজকদের নেতা এবং তাঁরা তাঁদের শিঙা নিয়ে য়ে যার জায়গায উঠে দাঁড়ালেন| 42 এরপর এই সব যাজকগণও তাঁদের নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়ালেন: মাসেয়, শময়িয়, ইলিয়াসর, উষি, যিহোনাথন, মল্কিয, এলম ও এষর|অতঃপর য়িষ্রহিযর পরিচালনায় এর দুটি দল গান শুরু করল| 43 ওই বিশেষ দিনটিকে উপলক্ষ করে যাজকরা বহু বলি উত্সর্গ করলেন| সকলেই খুশী ছিল কারণ ঈশ্বর সকলকে খুব খুশী করেছিলেন| এমন কি মেয়েদের ও তাদের বাচচাদেরও খুবই উত্তেজিত ও আনন্দিত দেখাচ্ছিল| বহু দূরের লোকরাও জেরুশালেম থেকে ভেসে আসা আনন্দের স্বর শুনতে পাচ্ছিল| 44 ভাঁড়ার ঘরের তত্ত্বাবধানের জন্য লোক ঠিক করার পর প্রতিশ্রুতি মতো লোকরা গাছের প্রথম ফল ও উত্পন্ন শস্যের দশ ভাগের এক ভাগ জমা করল| তত্ত্বাবধায়ক সেসব ফল ও ফসল ভাঁড়ারে তুলে রাখল| ইহুদীরা সকলেই দায়িত্বাধীন যাজক ও লেবীয়দের কাজে খুবই সন্তুষ্ট হয়েছিল| তাই তারা মুক্তহস্তে ভাঁড়ারের জন্য উপহার বয়ে আনছিল| 45 যাজকগণ ও লেবীয়রা তাঁদের ঈশ্বরের সেবা করছিলেন| তাঁরা লোকদের শুচি করার জন্য অনুষ্ঠান সম্পাদন করলেন| গায়ক ও দ্বাররক্ষীরাও দায়ূদ ও শলোমনের নির্দেশ পালন করেছিল| 46 (বহুকাল আগে, দায়ূদ এবং সঙ্গীত দলের পরিচালক আসফের সময় ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে অনেক প্রশস্তি এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপনের গান রচনা করেছিলেন|) 47 সরুব্বাবিল ও নহিমিয়ের রাজত্বের সময়ে, ইস্রায়েলের লোকরা দ্বাররক্ষী ও গায়কদের দৈনিক ব্যযের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন| ইস্রায়েলীয়রা লেবীয়দের জন্য অর্থ সরিয়ে রাখতেন| লেবীয়রা হরোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের জন্য সেই অর্থ রেখে দিয়েছিল|
1 সেদিন সবাই যাতে শুনতে পায়, সে ভাবে মোশির বিধি পুস্তকটি উচ্চস্বরে পাঠ করা হয়েছিল| প্রত্যেকে জানতে পারল য়ে, পুস্তকে অম্মোনীয় ও মোয়াবীয় ব্যক্তিদের ঈশ্বরের লোকদের মণ্ডলীতে য়োগ দেবার অনুমতি ছিল না| 2 এই নিষেধাজ্ঞার কারণ এই সমস্ত লোকরা ইস্রায়েলের লোকদের প্রয়োজনে খাদ্য বা জল তো দেয়ই নি, উপরন্তু ইস্রায়েলীয়দের অভিশাপ দেবার জন্য তারা বিলিয়মকে টাকা দিয়েছিল| কিন্তু আমাদের ঈশ্বর সেই অভিশাপকে আশীর্বাদে পরিণত করলেন| 3 ইস্রায়েলীয়রা যখন বিধি সম্বন্ধে জানতে পারল, তারা সমস্ত বিদেশীদের থেকে নিজেদের আলাদা করে নিল| 4 কিন্তু এ ঘটনা ঘটার আগে ইলিয়াশীব মন্দিরের একটি ঘর টোবিয়কে দিয়েছিলেন| ইলিয়াশীব ছিলেন মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরগুলির ভারপ্রাপ্ত যাজক আর টোবিয ছিলেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু| য়ে ঘরটি তিনি দিয়েছিলেন সেই ঘরটিতে দান হিসেবে পাওয়া শস্য, ধুপকাঠি সুগন্ধী বস্তু ও ঈশ্বরের মন্দিরের বাসন-কোসন ছাড়াও দ্রাক্ষারস, লেবীয় গায়কদের ও দ্বাররক্ষীদের ব্যবহারের তেল ও যাজকদের পাওয়া উপহার সামগ্রীগুলি থাকত| কিন্তু তা সত্ত্বেও ইলিয়াশীব ওই ঘরটি তাঁর বন্ধুকে দিয়েছিলেন| 5 6 এ ঘটনা যখন ঘটে, আমি তখন জেরুশালেমে ছিলাম না| সে সময় অর্থাত্ রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বের 32 বছরের মাথায়, আমি আবার বাবিলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই ও তাঁর সম্মতি নিয়ে আবার জেরুশালেমে ফিরে আসি| 7 ফিরে আসার পর আমি ইলিয়াশীবের এই দুঃখজনক কাজের কথা জানতে পেরে খুবই রেগে যাই| 8 ইলিয়াশীবের মতো একজন ব্যক্তি কিনা বয়ং ঈশ্বরের মন্দিরের একটি ঘর টোবিয়কে দিয়ে দিয়েছে! 9 আমি ঐ ঘরগুলিকে পরিষ্কার ও শুচি করার আদেশ দিই| তারপর আমি মন্দিরের থালাগুলি, শস্য নৈবেদ্য এবং ধুপধূনো ঐ ঘরগুলোতে রেখে দিই| 10 আমি একবার জানতে পারি, য়ে লোকেরা তাদের প্রতিশ্রুতি মতো লেবীয় ও গায়কদের শস্য ও খরচাপাতি না দেওয়ায তারা নিজেদের ক্ষেতে কাজ করতে য়েতে বাধ্য হয়েছে| 11 আমি দায়িত্বাধীন ব্যক্তিদের ডেকে জিজ্ঞেস করলাম, “তোমরা কেন ঈশ্বরের মন্দিরের ঠিকমতো দেখাশোনা করো নি?” এরপর আমি সব লেবীয়দের একত্র করলাম এবং তাদের নিজেদের জায়গায় ও মন্দিরের কাজে ফিরে য়েতে আদেশ দিলাম| 12 তখন যিহূদার সকলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীনিজেদের শস্য, দ্রাক্ষারস ও তেলের এক দশমাংশ মন্দিরে নিয়ে এলো এবং সেগুলি ভাঁড়ার ঘরে জড়ো করল| 13 আমি শেলিমিয় নামে এক যাজককে, সাদোক নামে এক জন শিক্ষককে ও পদায় নামে এক লেবীয়কে ভাঁড়ার ঘরের দায়িত্ব দিলাম| মত্তনযের পৌত্র ও সক্কুরের পুত্র হাননকে তাদের সহকারী হিসেবে নিযুক্ত করলাম| আমি জানতাম, আমি এদের ওপর ভরসা করতে পারি| এদের কাজ ছিল ভাঁড়ার ঘরের জিনিসপত্র তাদের আত্মীয়দের মধ্যে বিলিবণ্ট্ন করা| 14 হে ঈশ্বর, এই সমস্ত কাজের জন্য তুমি আমাকে মনে রেখো| আমার ঈশ্বরের মন্দির ও তাঁর কাজ পরিচালনার জন্য আমি ভক্তিভরে যা করেছি তা য়েন তুমি ভুলে য়েও না| 15 সেই সময়, আমি দেখলাম য়ে, বিশ্রামের দিনও যিহূদায় লোকে দ্রাক্ষারস বানানোর জন্য দ্রাক্ষা নিংড়ানোর কাজ করছে| আমি দেখলাম য়ে লোকে শস্য বয়ে এনে গাধার পিঠে তা বোঝাই করছে, তারা দ্রাক্ষা এবং অন্যান্য জিনিষপত্রও বিশ্রামের দিনে জেরুশালেমে নিয়ে আসছে| আমি তখন এই সব লোকদের সতর্ক করে দিয়ে বলি য়ে বিশ্রামের দিন কোন রকম খাবারদাবার বিক্রি করা তাদের উচিত্ নয়| 16 জেরুশালেমে, সোর শহরের কিছু লোক বাস করতো| তারা মাছ ও অন্যান্য অনেক জিনিসপত্র বিশ্রামের দিন জেরুশালেমে নিয়ে এসে বিক্রি করত, আর ইহুদীরাও সেই সব জিনিসপত্র কিনত| 17 আমি যিহূদার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে ডেকে বললাম, তারা ঠিক মতো কাজ করছে না| “তোমরা অত্যন্ত খারাপ কাজ করছো| বিশ্রামের দিনটিকেও তোমরা অন্যান্য য়ে কোন সাধারণ দিনের পর্য়াযে নিয়ে যাচ্ছো| 18 তোমরা অবগত আছো য়ে, আমাদের পূর্বপুরুষরাও ঠিক একই ভুল করেছিল, এবং তার জন্য ঈশ্বর আমাদের ও এই শহরকে দুর্য়োগ ও বিপত্তির মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন| এখন, তোমরা বিশ্রামের দিনটাকে সাধারণ দিনের মতো ব্যবহার করে ইস্রায়েলের ওপর আরও ক্রোধ নিয়ে আসছ|” 19 আমি তখন দ্বাররক্ষীদের প্রতি শুক্রবার, ঠিক অন্ধকার নামার আগে জেরুশালেমের দরজাগুলি বন্ধ করে তালা দেবার নির্দেশ দিয়ে বলি শনিবারের পবিত্র দিনটি না কাটা পর্য়ন্ত য়েন দরজা কোনো মতেই খোলা না হয়| আমি আমার নিজের বিশ্বস্ত লোককে ফটকের কাছে রেখে দিলাম ও তাদের ফটকগুলোর ওপর লক্ষ্য রাখতে নির্দেশ দিই যাতে বিশ্রামের দিন জেরুশালেমে কোন বোঝা না বহন করে আনা হয়| 20 একবার কি দুবার বনিকরা জেরুশালেমের ফটকের বাইরে রাত্রিবাস করেছিল| 21 আমি তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলাম য়ে, তারা যদি জেরুশালেমের দেওয়ালের বাইরে রাত্রিবাস করে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে| তারপর থেকে তারা আর কখনও বিশ্রামের দিনে তাদের জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসেনি| 22 এরপর আমি লেবীয়দের নিজেদের শুচি হতে আদেশ দিলাম| তারপর, তাদের ফটকগুলিতে মোতায়েন করা হল, যাতে কেউ বিশ্রামের দিনের পবিত্রতা নষ্ট না করতে পারে|হে ঈশ্বর, দয়া করে এসব কাজগুলি স্মরণে রেখো এবং আমার প্রতি তোমার মহতী করুণা দেখিও| 23 সে সময়ে আমি লক্ষ্য করি, কিছু যিহূদা ব্যক্তি অস্দোদ, অম্মোন ও মোয়াবের মেয়েদের বিয়ে করেছে| 24 এই সব বিবাহগুলির দরুণ, ছেলেমেয়েদের অর্ধেক ইহুদীদের ভাষায় কথা বলতে পারে না| এই সব শিশুরা অস্দোদ, অম্মোন ও মোয়াবের ভাষায় কথা বলতো| 25 আমি এই সব লোকদের তিরস্কার করে বললাম, তারা ভুল করেছে| আমি তাদের কয়েক জনকে আঘাত করে তাদের চুলের মুঠি ধরলাম| আমি তাদের ঈশ্বরের সামনে প্রতিজ্ঞা করতে বাধ্য করলাম| আমি তাদের বললাম, “তোমরা এই সব বিদেশী লোকদের মেয়েদের বিয়েক্টকরবে না| আর তোমাদের ছেলেদেরও এই সব বিদেশীদের মেয়েকে বিয়ে করতে দেবে না| 26 তোমরা তো জানো, এই ধরণের বিয়ের জন্য শলোমনের কি শাস্তি হয়েছিল| আর কোন দেশে শলোমনের মতো মহান রাজা ছিল না| ঈশ্বর শলোমনকে ভালোবাসতেন| তিনি তাঁকে সমগ্র ইস্রায়েলের রাজা করেছিলেন| কিন্তু তার বিদেশী স্ত্রীদের প্রভাবের জন্য শলোমনও পাপাচরণ করেছিল| 27 আর এখন আমরা দেখছি, তোমরাও এই ভয়ানক পাপাচরণ করছো| তোমরা ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছো না| তোমরা বিদেশী নারীদের ব্বিাহ করছো|” 28 ইলিয়াশীবের পুত্র যিহোয়াদা ছিলেন মহাযাজক| যিহোয়াদার এক পুত্র হোরোণের সন্বল্লটের জামাতা ছিল| আমি তাকে এই জায়গা ছেড়ে পালিয়ে য়েতে বাধ্য করি| 29 হে ঈশ্বর, তুমি এই সব লোকদের শাস্তি দাও| এরা যাজকবৃত্তিকে কলুষিত করেছে| তারা তাদের যাজক বৃত্তিকে অপবিত্র করেছিল| তুমি যাজক ও লেবীয়দের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছিলে, এরা তা পালন করেনি| 30 আমি তাই যাজক ও লেবীয়দের পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করেছিলাম| আমি সমস্ত বিদেশীয়দের সরিয়ে দিয়েছিলাম, এবং আমি লেবীয়দের ও যাজকদের তাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব অর্পন করেছিলাম| 31 লোকরা যাতে উপহারস্বরূপ তাদের প্রথম ফল, ফসল এবং কাঠ নির্দ্দেশিত সময় নিয়ে আসে আমি তার ব্যবস্থা করেছিলাম|হে আমার ঈশ্বর, এই সব ভাল কাজ করার জন্য আমাকে তুমি মনে রেখো|
1 মহারাজ অহশ্বেরশের রাজত্বকালে এই ঘটনা ঘটেছিল| অহশ্বেরশ ভারতবর্ষ থেকে কূশ দেশ পর্য়ন্ত বিস্তৃত 127 টি প্রদেশের শাসনকর্তা ছিলেন| 2 তাঁর রাজধানী শূশনের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি সাম্রাজ্য শাসন করতেন| 3 রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের তৃতীয় বছরে তিনি তাঁর আধিকারিক ও নেতাদের জন্য একটি ভোজসভার আয়োজন করেছিলেন| পারস্য ও মাদিযার সেনাবাহিনীর প্রধান সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও প্রশাসকরা সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন| 4 এই ভোজসভা একটানা 180 দিন ধরে চলেছিল| সেই সময়, রাজা অহশ্বেরশ সবাইকে তাঁর সাম্রাজ্যের বিপুল সম্পদ, তাঁর রাজপ্রাসাদের রাজকীয সৌন্দর্য় ও ঐশ্বর্য় প্রদর্শন করেছিলেন| 5 এই 180 দিন শেষ হবার পর তিনি তাঁর প্রাসাদের ভেতরের বাগানে সাতদিন ব্যাপী আরো একটি ভোজসভার আয়োজন করেছিলেন| রাজধানী শূশনের সব চেযে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ লোক সকলকেই সেই ভোজসভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়| 6 প্রাসাদের ভেতরের বাগানে সাদা ও নীল রঙের দামী লিনেন কাপড়ের চাঁদোযা টাঙ্গানো ছিল| শ্বেতপাথরের স্তম্ভে রূপোর আংটায লিনেনের সাদা ও বেগুনী কাপড়ের দড়ি দিয়ে সেগুলি ঝোলানো হয়| বহুমূল্য পাথর, য়েমন মুক্তো, শ্বেতপাথর এবং অন্যান্য পাথর, খচিত মেঝেতে বসানো ছিল সোনা ও রূপোর তৈরী কেদারা| 7 সোনার পানপাত্রে দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হত| এই পানপাত্রগুলি ছিল বিভিন্ন আকারের| রাজা অহশ্বেরশ খুবই বদান্য ছিলেন বলে সেখানে সুরার প্রাচুর্য় ছিল| 8 অহশ্বেরশ খুবই উদার প্রকৃতির ছিলেন| তিনি দ্রাক্ষারসবাহক ভৃত্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, অতিথিদের য়েন তাদের পছন্দ মতো দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হয়| আর তাঁর পরিবেশকরাও রাজাজ্ঞা অনুযায়ীঅঢেল পরিমাণ দ্রাক্ষারস পরিবেশন করেছিল| 9 একই সময়, রাণী বষ্টীও রাজপ্রাসাদে মহিলাদের জন্য একটি আলাদা ভোজসভার ব্যবস্থা করেছিলেন| 10 ভোজসভার সপ্তম দিনে দ্রাক্ষারস পান করবার পর প্রফুল্ল মনে রাজা অহশ্বেরশ, মহূমন, বিস্থা, হর্বোণা, বিগ্থা, অবগথ, সেথর, কর্ক্কস প্রমুখ সাত জন পরিবেশনকারী নপুংসককে আদেশ করলেন রাণী বষ্টীকে সম্রাজ্ঞীর মুকুট পরিয়ে সেখানে নিয়ে আসতে| তিনি চাইছিলেন সভায় উপস্থিত গণ্যমান্য অতিথিদের রাণী বষ্টী তাঁর সৌন্দর্য় প্রদর্শন করুন| কারণ রানী বষ্টী ছিলেন খুবই সুন্দরী| 11 12 কিন্তু রাজার ভৃত্যরা গিয়ে যখন রাণীকে তাঁর আদেশের কথা জানালো, তিনি রাজার সভায় আসতে রাজী হলেন না| এর ফলে রাজা খুবই রুদ্ধ হলেন| 13 প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী, রাজা বিধি ও শাস্তি সম্পর্কে বিচক্ষণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করলেন| কর্শনা, শেথর, অদ্মাখা, তর্শীশ, মেরস, মর্সনা, মমূখন প্রমুখ এই সাত জন পরামর্শদাতা ছিলেন রাজার খুবই ঘনিষ্ঠ এবং পারস্য ও মাদিয়ার সর্বাপেক্ষা উচ্চপদস্থ আধিকারিকবর্গ| 14 15 রাজা তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “বিধি অনুযায়ীরাণী বষ্টীকে কি শাস্তি দেওয়া য়েতে পারে? কারণ রাজা অহশ্বেরশের য়ে আদেশ নপুংসক ভৃত্যরা তাঁর কাছে নিয়ে গিয়েছিল তা তিনি পালন করেন নি|” 16 তখন আধিকারিক মমূখন অন্যান্য আধিকারিকদের উপস্থিতিতে রাজাকে বললেন: “রাণী বষ্টী রাজার প্রতি অন্যায় করেছেন এবং রাজা অহশ্বেরশের সাম্রাজ্যের সমস্ত রাজ্যের সকল নেতা ও লোকদের প্রতি অন্যায় করেছেন| 17 “কারণ সাম্রাজ্যের অন্যান্য নারীরা এই ঘটনার কথা জানার পর, তারাও তাদের স্বামীদের নির্দেশ অমান্য করবে| আর তখন রশ্ন করলে তারা সকলেই রাণী বষ্টীর দৃষ্টান্ত দিয়ে বলবে, ‘রাজা অহশ্বেরশের রানী বষ্টীকে তাঁর সামনে আসতে আদেশ করেছিলেন কিন্তু তিনি তা করতে অস্বীকার করেছিলেন|’ 18 “পারস্য ও মাদিযার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের স্ত্রীরা রাণীর এই ব্যবহার স্বচক্ষে দেখলেন| এর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাঁরাও এবার রাজার আধিকারিকদের সঙ্গে এই একই ব্যবহার করবেন এবং ফলতঃ গৃহবিবাদ ও অশান্তির সূচনা হবে|” 19 “সুতরাং মহারাজ যদি ইচ্ছা করেন তবে আমার পরামর্শ: রাজার নামে এবং পারস্য ও মাদিয়ার রাজার শাসনমতে একথা লেখা হোক, ‘বষ্টী য়েন আর কখনও রাজাকে নিজের মুখ না দেখান|’ বষ্টী য়েন আর কখনও এই প্রাসাদে পা না রাখেন এবং রাজা তাঁর রাণীর পদ কোন য়োগ্যতর নারীকে দেন| 20 রাজার এই আদেশ যখন তাঁর সুবিস্তৃত সাম্রাজ্যে ঘোষণা করা হবে একমাত্র তখনই সবচেযে গণ্যমান্য থেকে একেবারে তুচ্ছ সমস্ত মহিলারা তাদের স্বামীকে শ্রদ্ধা করবে|” 21 রাজা অহশ্বেরশ এবং তাঁর আধিকারিকদের এই উপদেশ পছন্দ হল| তাই রাজা মমূখনের উপদেশ অনুযায়ীই কাজ করলেন| 22 অহশ্বেরশ তাঁর রাজ্যের প্রতিটি অঞ্চলে প্রতিটি ভাষায় চিঠি পাঠালেন য়ে প্রত্যেকটি পুরুষ তার পরিবারের শাসক হবে|
1 পরে রাজা অহশ্বেরশের রাগ কমলে বষ্টী কি কি করেছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে তিনি কি নির্দেশ দিয়েছেন, সে কথা তাঁর মনে পড়লো| 2 রাজার ব্যক্তিগত ভৃত্যরা তখন তাঁর জন্য সুন্দরী কুমারী কন্যা অনুসন্ধানের প্রস্তাব করলো| তারা বলল, “প্রথমে মহারাজ বয়ং তাঁর শাসনাধীন প্রত্যেকটি প্রদেশে এক জন নেতা বেছে নেবেন| 3 এরপর সেই নেতারা তাদের অঞ্চলের সুন্দরী কুমারীদের রাজধানী শূশনে নিয়ে আসবে| তারপর এদের সকলকে রাখা হোক রাজঅন্তঃপুরচারিণীদের সঙ্গে মহিলাদের দায়িত্বে য়ে আছে সেই রাজার নপুংসক হেগয়ের তত্ত্বাবধানে| তারপর তাদের রূপ পরিচর্য়া করা হবে| 4 তারপর রাজা তাদের মধ্যে এক জনকে রাণী বষ্টীর (শূন্য) পদে অভিষিক্ত করবেন|” রাজার এই প্রস্তাব মনে ধরায় তিনি এতে সম্মত হলেন| 5 এসময়ে রাজধানী শূশনে মর্দখয় নামে বিন্যামীনের পরিবারের এক ইহুদী ব্যক্তি বাস করতেন| মর্দখয় ছিলেন যায়ীরের পুত্র ও কীশের পৌত্র| 6 বাবিল-রাজ নবূখদ্নিত্সর যিহূদা-রাজ যিহোয়াকিনকে অন্যান্য ইহুদীদের সঙ্গে এবং মর্দখয়ের সঙ্গে জেরুশালেম থেকে বন্দী করে নিয়ে যান| 7 মর্দখয়ের হদসা নামে একটি সম্পর্কিত বোন ছিল| পিতা-মাতা না থাকায় মর্দখয় তাকে নিজের কন্যা স্নেহে প্রতিপালন করেন| এই মিষ্টি, রূপসী, স্বাস্থ্যবতী রমণীর আরেকটি নাম ছিল ইষ্টের| 8 রাজ্যে রাজার আদেশ জারি হবার পর রাজধানী শূশনে হেগযের তত্ত্বাবধানে য়েসব যুবতীদের আনা হয়েছিল তাদের মধ্যে ইষ্টেরও ছিলেন| 9 হেগয় ইষ্টেরকে পছন্দ করতো| এমে সে হেগয়ের বেশ প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠে এবং হেগয় যত্নসহকারে ইষ্টেরের খাবারদাবার ও রূপ পরিচর্য়ার ব্যবস্থা করে| রাজপ্রাসাদ থেকে সাত জন পরিচারিকাকে বেছে নিয়ে হেগয় তাদের ইষ্টেরের পরিচর্য়ায নিয়োগ করে| তারপর হেগয়, ইষ্টের ও তার সাত পরিচারিকাকে সেখানে স্থানান্তরিত করে যেখানে রাজার মহিলারা বাস করত| 10 ইষ্টের য়ে ইহুদী সেকথা ও কাউকে বলেনি| মর্দখয় তাকে তার পারিবারিক বৃত্তান্ত প্রকাশ করতে বারণ করেছিল, সুতরাং সে কারো কাছে কিছু খুলে বলে নি| 11 প্রত্যেক দিন মর্দখয় এসে রাজঅন্তঃপুরচারিণীদের বাসস্থানের আশেপাশে ঘোরাফেরা করতেন| ইষ্টের কেমন আছে আর তার জীবণে কী ঘটছে জানার জন্যই মর্দখয় রোজ আসতেন| 12 রাজা অহশ্বেরশের সামনে উপস্থিত হবার আগে প্রতিটি মেযেকে এক বছর ধরে রূপচর্চা করতে হোত| রূপচর্চার জন্য তাদের ছ’মাস সুগন্ধী তেল মাখতে হত এবং তারপর আরো ছ’মাস অন্য উত্কৃষ্টতম সুগন্ধি মাখতে হত| 13 শুধু মাত্র এভাবেই প্রতিটি যুবতী রাজার সামনে য়েতে পারতো! এসময়ে একটি মেয়ের যা কিছু প্রয়োজন রাজঅন্তঃপুর থেকে তা দেওয়া হতো| 14 সন্ধ্যায় রাজপ্রাসাদে ঢোকার পর, মেযেটিকে পর দিন ভোরে প্রাসাদের আরেকটি অংশে, যেখানে অন্য মহিলারা থাকত সেখানে ফিরে আসতে হতো| এরপর তাকে শাশ্গস নামে আরেকজন নপুংসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হতো| শাশ্গস ছিল রাজার উপপত্নীদের তত্ত্বাবধায়ক| যতক্ষণ পর্য়ন্ত না রাজা সন্তুষ্ট হয়ে বয়ং ঐ মেয়েদের ডেকে পাঠাতেন ততক্ষণ তারা কখনও রাজার কাছে ফিরে য়েতে পারতো না| 15 ইষ্টেরের যখন রাজার কাছে যাবার পালা এলো, ইষ্টের কোন কিছু চাইলেন না| শুধু তিনি নপুংসক হেগয়ের পরামর্শ চাইলেন য়ে, তাঁর সঙ্গে করে কি নিয়ে যাওয়া উচিত্| (ইষ্টের ছিলেন মর্দখয়ের পোষ্যপুত্রী, তিনি ছিলেন তার মামা অবীহয়িলের কন্য|) ইষ্টেরকে য়েই দেখতো সেই পছন্দ করতো| 16 অতঃপর রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের সপ্তম বছরের দশম মাসে অর্থাত্ টেবেত্ মাসে ইষ্টেরকে রাজার সামনে নিয়ে আসা হল| 17 রাজা অন্যান্য মেয়েদের চেয়ে সব চেয়ে বেশি ইষ্টেরকেই ভালবাসলেন এবং তিনি দ্রুত তাঁর প্রিয়তমা হয়ে উঠলেন| এরপর রাজা অহশ্বেরশ ইষ্টেরের মাথায় মুকুট পরিয়ে তাঁকে রাণী বষ্টীর আসনে রাণী হিসেবে অভিষিক্ত করলেন| 18 ইষ্টেরের সম্মানে রাজা তাঁর রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ গণ্যমান্য ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি বড় ভোজসভার আয়োজন করলেন| এছাড়াও প্রত্যেকটি প্রদেশে ছুটি ঘোষণা করা হল ও দাতা রাজা অহশ্বেরশ তাঁর লোকদের অনেক উপহার পাঠালেন| 19 সমস্ত মেয়েরা যখন দ্বিতীয় বারের জন্য এক সঙ্গে জড়ো হল, মর্দখয় তখন রাজদ্বারের কাছেই বসেছিলেন| 20 ইষ্টের য়ে ইহুদী তা ইষ্টের তখনও গোপন রেখেছিলেন| নিজের পরিবারের ইতিহাসও তিনি কাউকে জানান নি, কারণ মর্দখয় তাঁকে সত্য প্রকাশ করতে বারণ করেছিলেন| বরাবরের মতো ইষ্টের মর্দখয়কে মান্য করা অব্যাহত রাখল য়েমনটি সে করত যখন মর্দখয় তার য়ত্ন নিত| 21 মর্দখয় যখন রাজপ্রাসাদের দ্বারের কাছে বসেছিলেন তিনি শুনতে পেলেন বিগ্থন ও তেরশ নামে রাজার দুই আধিকারিক যারা দরজায পাহারায ছিল, রাজার প্রতি রুদ্ধ হয়ে তাঁকে হত্যা করার চএান্ত করছে| 22 মর্দখয় এই চএান্তের কথা শুনতে পেয়ে তা ইষ্টেরকে জানালেন এবং রাণী ইষ্টের একথা জানালেন বয়ং রাজাকে| রাণী ইষ্টের রাজাকে একথাও বললেন য়ে মর্দখয় এই চএান্তের কথা জানতে পেরেছে| 23 অনুসন্ধান করে দেখা গেল, মর্দখয় য়ে খবর জানিয়েছেন তা সঠিক| তখন ঐ দুই দ্বাররক্ষীকে একটি স্তম্ভে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেওয়া হল| এই সমস্ত ঘটনা রাজার সামনে রচিত ‘রাজাগনের ইতিহাস’ গ্রন্থে নথিবদ্ধ করা আছে|
1 এসব ঘটনা ঘটার পরে রাজা অগাগীয় হম্মদাথার পুত্র হামন নামে এক ব্যক্তিকে সম্মান জানান| রাজা হামনকে উচ্চপদে উন্নীত করেন এবং তাঁর অন্য সমস্ত আধিকারিকদের থেকে উচ্চতর পদে তাকে নিযুক্ত করেন| 2 রাজা নির্দেশ দিয়েছিলেন য়ে মুখ্যদ্বার দিয়ে ঢোকবার সময় প্রত্যেক ব্যক্তিকে মাথা ঝুঁকিয়ে হামনকে সম্মান জানাতে হবে| তাই রাজার সব নেতারা রাজদ্বারে হামনের কাছে প্রণত হয়ে তাঁকে সম্মান জানাতেন, কিন্তু শুধুমাত্র মর্দখয় তা করতে রাজী হলেন না| 3 তখন অন্যান্য প্রধানরা তাঁকে প্রশ্ন করলেন, “আপনি কেন রাজার নির্দেশ মেনে হামনকে সম্মান দেখান না?” 4 সমস্ত প্রধানরা এবিষয়ে দিনের পর দিন মর্দখয়কে বলা সত্ত্বেও মর্দখয় হামনের সামনে কোন মতেই মাথা নীচু করতে রাজী হলেন না| তখন হামন কি করে তা দেখার জন্য এই সমস্ত নেতারা হামনকে একথা জানালেন| মর্দখয় এই আধিকারিকদের বলেছিলেন য়ে তিনি ইহুদী| 5 হামন যখন দেখলেন সত্যি সত্যিই মর্দখয় তাকে সম্মান দেখাতে অনিচ্ছুক তখন তিনি খুবই রুদ্ধ হলেন| 6 মর্দখয় য়ে ইহুদী হামন সে কথাও জেনেছিলেন| হামনের ইচ্ছা ছিল শুধু মর্দখয় নয়, রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যে বসবাসকারী মর্দখযের জাতির সবাইকে হত্যা করা হোক| 7 অহশ্বেরশের রাজত্বের দ্বাদশ বছরের প্রথম মাসে, নীষণ মাসে হামন অক্ষ নিক্ষেপ করে একটি মাসের একটি বিশেষ দিন বেছে নিলেন| সেই দিনটি ছিল দ্বাদশতম মাস, অদর মাস| (সে সময় অক্ষকে “পূরও” বলা হোত|) 8 তারপর রাজা অহশ্বেরশের কাছে এসে হামন বললেন, “হে রাজন, আপনার রাজ্যের সর্বত্র এক বিশেষ জাতির মানুষরা বাস করছে, যাদের সংস্কৃতি অন্যদের থেকে আলাদা| তারা অন্য কোন জাতির লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করে না, এমন কি আপনার বিধিও মেনে চলে না| এই সমস্ত লোকদের আপনার রাজ্যে বসবাস করতে দেওয়া উচিত্ বলে আমি মনে করি না| 9 “রাজার প্রতি আমার বিনীত নিবেদেন: আমার পরামর্শ হল, এই সব লোকদের শেষ করে দেওয়ার জন্য আপনি নির্দেশ দিন| আর আমি রাজ কোষাগারে 10,000 রৌপ্যমুদ্রা জমা দেবো|” 10 রাজা তখন তাঁর আঙুল থেকে একটি আংটি বের করে হামনকে দিলেন| হামন ছিলেন ইহুদীদের শএু| তিনি ছিলেন অগাগিয হম্মদাথার পুত্র| রাজা তাঁকে বললেন, “রৌপ্য মুদ্রাগুলি তুমি তোমার জন্য রাখ এবং ইহুদীদের তুমি যা খুশি করতে পারো|” 11 12 তখন প্রথম মাসের 13 দিনে রাজার সমস্ত সচিবদের ডেকে পাঠানো হল এবং তারা প্রত্যেক আঞ্চলিক ভাষায় হামনের নির্দেশ লিখে নিলো| তারা সেই নির্দেশ লিখে নিয়ে সমস্ত অঞ্চলের প্রাদেশিক কর্তাকে পাঠিয়ে দিল| এই নির্দেশ বয়ং রাজা অহশ্বেরশের হুকুমে লেখা হল এবং জারি করা হল এবং তাঁর অঙ্গুরীয দিয়ে শীলমোহর করা হল| 13 এই সমস্ত চিঠি নিয়ে বার্তাবাহকরা রাজ্যের সমস্ত অঞ্চলে গেলেন| চিঠিটি একটি নির্দিষ্ট দিনে বযস নির্বিশেষে সমস্ত ইহুদীকে শেষ করবার আদেশ বহন করছিল| দ্বাদশতম মাস, অদর মাসের 13 দিনকে এই হত্যালীলার জন্য বাছা হয়েছিল| এছাড়াও, ইহুদীদের সমস্ত বিষয সম্পত্তি বাজেযাপ্ত করবার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল| 14 এই নির্দেশ সম্বলিত চিঠির প্রতিলিপি সমস্ত প্রদেশগুলিতে এবং সব লোকদের কাছে পাঠানো হল| বলা হোল এই আদেশকে বিধি হিসেবে মানতে হবে এবং প্রকাশ্য স্থানে রাখতে হবে যাতে ওই সমস্ত লোকরা সেই দিনের জন্য প্রস্তত হতে পারে| 15 রাজার নির্দেশে বার্তাবাহকরা যেখানে এই আদেশ জারি হয়েছিল, সেই রাজধানী শূশন থেকে তত্ক্ষণাত্ রওনা হল| তারপর রাজা ও হামন একসঙ্গে দ্রাক্ষারস পান করতে বসলেন| শূশনের সকলে এ নির্দেশে বিচলিত হল| ভুল বোঝাবুঝি হল| লোকে উদ্বিগ্ন হল|
1 মর্দখয় এসব কথা জানতে পারলেন| তিনি ইহুদীদের বিরুদ্ধে রাজার দেওয়া নির্দেশের কথা জানতে পেরে, নিজের প্রকৃত পোশাক ছিঁড়ে ফেলে শোকের পোশাক পরলেন| তারপর সারা মাথায় ভস্ম মেখে উচ্চস্বরে কাঁদতে কাঁদতে শহরে বেড়ালেন| 2 তিনি এভাবে রাজদ্বার পর্য়ন্ত গেলেন কারণ শোকের পোশাক পরে কাউকে এভাবে দরজার ভেতরে য়েতে দেওয়া হতো না| 3 প্রত্যেকটি প্রদেশে যেখানে যেখানে রাজার নির্দেশ জারি করা হয়েছিল যেখানে ইহুদী সম্প্রদাযের মধ্যে শোকের ছায়া পড়ে গিয়েছিল| তারা সকলে অভুক্ত থেকে উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করছিল| অনেক ইহুদী মাথায় ভস্ম মেখে মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছিল| 4 ইষ্টেরের পরিচারিকা ও নপুংসক পরিচারকরা এসে তাঁকে মর্দখয়ের কথা জানালো| সেকথা শুনে ইষ্টের মর্মাহত ও বিষণ্ন হলেন| তিনি শোকের পোশাক ছেড়ে ফেলতে অনুরোধ জানিয়ে মর্দখয়ের জন্য জামাকাপড় পাঠালেন| কিন্তু মর্দখয় তা পরতে রাজী হলেন না| 5 তখন ইষ্টের হথক নামে রাজার এক নপুংসক পরিচারককে ডেকে পাঠালেন| হথককে রাজা ইষ্টেরের পরিচর্য়ার কাজে নিয়োগ করেছিলেন| তাকে ইষ্টের মর্দখয়ের দুঃখের কারণ অনুসন্ধান করতে বললেন| 6 তখন হথক রাজপ্রাসাদের ফটকের সামনে শহরের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে যেখানে মর্দখয় অপেক্ষা করছিল সেখানে গেল| 7 মর্দখয় হথককে যা যা ঘটেছে সে সব কথাই বললেন| এমনকি ইহুদীদের নিধনের জন্য হামন রাজকোষাগারে য়ে অর্থ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সঠিক পরিমাণও মর্দখয় তাকে জানালেন| 8 মর্দখয় তাকে ইহুদী হত্যার জন্য রাজার দেওয়া নির্দেশ-নামার একটি প্রতিলিপিও দিলেন| এই নির্দেশ-নামাটি শূশনের সর্বত্র পাঠানো হয়েছিল| তিনি হথককে নির্দেশ-নামাটি ইষ্টেরকে দেখিয়ে যা ঘটেছিল তা ব্যাখ্যা করতে বললেন| উপরন্তু তিনি তাকে ইষ্টেরকে রাজার কাছে গিয়ে তাঁর স্বজাতীযদের জন্য ও মর্দখযের জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করার জন্য বলতে বললেন| 9 হথক ফিরে গিয়ে ইষ্টেরকে মর্দখযের সব কথাই জানাল| 10 ইষ্টের তখন হথককে বললেন, মর্দখয়কে জানাতে: 11 “রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দা ও রাজার সমস্ত নেতারাই জানেন, য়ে ডাক না পড়লে পুরুষ বা নারী য়েই হোক না কেন রাজার কাছে য়েতে পারে না| যদি কেউ রাজার কাছে যায় তবে তার মৃত্যুদণ্ড হয়| এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিএম হল: রাজা যদি কারো হাতে তাঁর সোনার রাজদণ্ডটি দেন, তাহলে এক্ষেত্রে সে ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে নিষ্কৃতি পায| কিন্তু আমাকে রাজা গত 30 দিনের মধ্যে একবারও ডেকে পাঠান নি|” 12 মর্দখয়কে ইষ্টেরের বার্তা জানানো হলে তিনি ইষ্টেরকে বলে পাঠালেন: “ইষ্টের, এমন ভেবো না য়ে যদিও তুমি রাজপ্রাসাদে বাস করছো, ইহুদী হয়েও নিজে বেঁচে যাবে| 13 14 তুমি যদি এখন চুপ করে থাকো, ইহুদীদের জন্য সাহায্য ও স্বাধীনতা কোথাও না কোথাও থেকে আসবে, কিন্তু তুমি ও তোমার পিতার পরিবারের সকলে মারা যাবে| কে জানে, হয়তো ঠিক এরকম কোন একটা সময়ের জন্যই তোমাকে রাণী করা হয়েছে!” 15 ইষ্টেরের উত্তরে মর্দখয়কে জানালেন: “শূশনের সমস্ত ইহুদীদের সঙ্গে আমার জন্য উপবাস করো| তিন দিন, তিন রাত্রি তোমরা কোন খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ কর না| আমি ও আমার পরিচারিকারাও তোমাদের মতোই উপবাস করবো| তারপর আমি রাজার কাছে যাবো| আমি জানি, না ডাকতে রাজার কাছে যাওয়াটা নিয়ম বিরুদ্ধ| কিন্তু আমি তাও যাবো, তাতে যদি আমার মৃত্যুও হয়, তো হবে|” 16 17 মর্দখয় তখন গিয়ে ইষ্টের তাঁকে যা যা করতে বলেছিলেন সবই করলেন|
1 তৃতীয় দিন ইষ্টের তাঁর বিশেষ পোশাক পরিধান করে রাজার প্রাসাদের ভেতরে গিয়ে রাজ দরবারের সামনে, রাজা যেখানে দরবার কক্ষের প্রবেশ পথের দিকে মুখ করে তাঁর সিংহাসনে বসতেন, সেখানে গিয়ে দাঁড়ালেন| 2 রাণীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রাজা খুবই খুশী হলেন এবং তত্ক্ষণাত্ তাঁর দিকে নিজের সোনার রাজদণ্ডটি এগিয়ে দিলেন| ইষ্টের তখন সভার ভেতরে রাজার সান্নিধ্যে গিয়ে সুবর্ণ রাজদণ্ডের শেষাংশ স্পর্শ করলেন| 3 তখন রাজা ইষ্টেরকে রশ্ন করলেন, “কি কারণে তোমায় এতো বিমর্ষ দেখাচ্ছে রাণী ইষ্টের? তুমি কি আমায় কিছু জিজ্ঞেস করতে চাও? আমার কাছে যদি তুমি কিছু চাও, এমনকি তুমি যদি রাজ্যের অর্ধেকও চাও তাও আমি তোমায দেবো|” 4 ইষ্টের জবাব দিলেন, “আমি আপনার জন্য ও হামনের জন্য একটি ভোজের আয়োজন করেছি| দয়া করে হামনের সঙ্গে আজ সেই ভোজসভায় আসুন|” রাজা বললেন, “হামনকে শীঘ্রই নিয়ে এসো যাতে ইষ্টের যা বলছে আমরা তাই করতে পারি|” অতএব রাজা ও হামন ইষ্টেরের আযোজিত ভোজসভায় গেলেন| যখন তাঁরা দ্রাক্ষারস পান করছিলেন তখন রাজা আবার ইষ্টেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার অনুরোধটা কি? তুমি যদি আমার রাজ্যের অর্ধেকও চাও তা তোমায় দেওয়া হবে| ইষ্টের উত্তর দিলেন, “আমার অনুরোধ হল, রাজা যদি আমার ওপর খুশী হয়ে থাকেন এবং তিনি যদি আমার ইচ্ছামত জিনিষ আমাকে দিতে পারেন তাহলে আমার ইচ্ছা হল: আমি চাই রাজা এবং হামন দয়া করে আগামীকাল আমার বাড়ীতে আসুন| আমি একটি ভোজসভার আয়োজন করব এবং ঐ সভায় আমার ইচ্ছা প্রকাশ করব|” 5 6 7 8 9 হামন সেদিন রাজার বাড়ী থেকে খুবই খুশি মনে ও আনন্দিত চিত্তে আসছিলেন, কিন্তু রাজতোরনের সামনে মর্দখয়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি খুব রেগে গেলেন| তিনি যখন পাশ দিয়ে গেলেন তখন মর্দখয় মাথা নীচু করলেন না বা হামনকে সম্মান দেখালেন না| তিনি হামনকে কখনও ভয় পেতেন না আর এ ব্যপারে হামন খুব রুদ্ধ ছিলেন| 10 যাই হোক কোন মতে রাগ চেপে হামন বাড়ি চলে গেলেন| বাড়ি ফিরে হামন তাঁর বন্ধুদের ও স্ত্রী সেরশকে ডেকে পাঠালেন| 11 তারপর তিনি কত বড়লোক তা নিয়ে, তাঁর পুত্রদের সংখ্যা নিয়ে ও রাজা তাঁকে কি ভাবে খাতির করেন তা নিয়ে বড়াই করতে শুরু করলেন| রাজা য়ে তাঁকে রাজ্যের সর্বোচচ পদটি দিয়েছেন একথাও তিনি জানাতে ভুললেন না| 12 “শুধু এই নয়,” হামন বললেন, “রাণী আগামীকাল রাজার জন্য য়ে ভোজসভার ব্যবস্থা করেছেন তাতে এক মাত্র আমাকেই রাজার সঙ্গে য়েতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন| 13 কিন্তু এসব সত্ত্বেও আমি খুশি হতে পারছি না| যতক্ষণ ওই ইহুদী মর্দখয়টাকে রাজদ্বারের কাছে বসে থাকতে দেখবো ততক্ষণ আমার পক্ষে খুশী হওয়া সম্ভব নয়|” 14 তখন হামনের স্ত্রী সেরশ ও হামনের বন্ধুরা পরামর্শ দিলেন, “কাউকে দিয়ে একটা বড় 75 ফুট মতো থাম্বা বানিয়ে, রাজাকে বলো সকাল বেলা ওটায মর্দখয়কে ফাঁসি দিতে| আর তারপর খুশি মনে রাজাকে নিয়ে ভোজসভায় য়েও!”এই প্রস্তাবটা হামনের বেশ মনে ধরায, তিনি মর্দখয়কে ফাঁসি দেবার জন্য স্তম্ভ বানাতে হুকুম দিলেন|
1 সেদিন রাতে রাজার চোখে কিছুতেই ঘুম আসছিল না| রাজা তখন তাঁর এক ভৃত্যকে ডেকে রাজাদের ইতিহাস বই থেকে যেখানে রাজাদের রাজত্ব কালের সব ঘটনা নথিভুক্ত করা আছে তা পড়ে শোনাতে বললেন| 2 ভৃত্যটি তখন রাজাকে, রাজার আধিকা-রিকবিগ্থন ও তেরশ যারা প্রবেশপথ পাহারা দিত, তাদের দুষ্ট চএান্তের কথা এবং মর্দখযের কথা, য়ে চএান্তের কথা শুনতে পেয়েছিল এবং প্রাসাদে জানিয়ে দিয়েছিল তা পড়ে শোনালো| 3 রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “মর্দখয়কে এর জন্য কি সম্মান এবং পুরস্কার দেওয়া হয়েছে?”ভৃত্যরা রাজাকে জানালো, “মর্দখযের জন্য কিছুই করা হয়নি|” 4 ঠিক সে সময় হামন রাজপ্রাসাদের বহির্দ্বারে প্রবেশ করলেন| হামন, তখন মর্দখয়কে ফাঁসি দেবার জন্য রাজার অনুমোদন নিতে এসেছিলেন| রাজা বাইরে পাযের আওয়াজ পেয়ে জানতে চাইলেন, “এইমাত্র প্রাঙ্গণের ভেতরে কে এলো?” 5 ভৃত্যরা উত্তর দিল, “হামন চাতালে দাঁড়িয়ে আছেন|”রাজা বললেন, “তাকে ভেতরে নিয়ে এসো|” 6 হামন ভেতরে আসার পর রাজা তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, “হামন, রাজা কাউকে সম্মান দিতে চাইলে তা কিভাবে দেওয়া উচিত্?”হামন মনে মনে ভাবলো, “আমি ছাড়া সম্মান পাওয়ার আর কে আছে? আমি নিশ্চিত, রাজা নিশ্চয়ই আমাকে সম্মান জানানোর কথা ভাবছেন|” 7 হামন তখন রাজাকে বললেন, “মহারাজ আপনি যদি কাউকে সম্মান দেখাতে চান তাহলে, 8 আপনার ভৃত্যদের আপনার নিজের পরা একটি পোশাক ও আপনার নিজের চড়া একটি ঘোড়া আনতে বলুন| ঘোড়াটির মাথায় ভৃত্যরা একটি রাজমুকুট পরিয়ে দিক| 9 এরপর আপনার কোন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে এই রাজপোশাকটি, মহারাজ য়ে ব্যক্তিকে সম্মান জানাতে চান তাকে পরতে সাহায্য করতে বলুন এবং সেই নেতাকে বলুন ঐ ব্যক্তিকে সেই ঘোড়ার ওপর বসিযে সারা শহরের রাস্তায় এই বলে ঘুরে বেড়াতে, ‘রাজা য়াঁকে সম্মান দেখাতে চান তাঁর জন্য এটা করা হল|”‘ 10 রাজা তখন হামনকে আদেশ দিলেন, “তাড়াতাড়ি গিয়ে ঐ ইহুদী মর্দখযের জন্য একটি ঘোড়া ও পোশাকের ব্যবস্থা কর| যাও, মর্দখয় প্রাসাদের প্রবেশ পথের কাছে অপেক্ষা করে আছে| তুমি য়ে ভাবে বলেছো, সে ভাবে তাঁকে সম্মান দেখাও|” 11 হামন গিয়ে রাজার পোশাক ও ঘোড়া নিয়ে এলেন| তারপর মর্দখয়কে নিজে সেই পোশাক পরিয়ে, ঘোড়ায় চড়িযে, শহরের প্রতিটি রাস্তায় য়েতে য়েতে বলতে লাগলেন, “রাজা য়াঁকে সম্মান দেখাতে চান এভাবেই দেখান!” 12 এরপর মর্দখয় আবার রাজদ্বারেই ফিরে গেলেন কিন্তু অপমানিত হামন লজ্জায বাড়ি ফিরে এলেন| বাড়ি ফিরে এসে লজ্জায ও অপমানে মুখ ঢাকলেন| 13 তিনি তাঁর স্ত্রী ও বন্ধুদের সব কথা খুলে বললেন| হামনের স্ত্রী ও বন্ধুরা হামনকে বললো, “মর্দখয় যদি ইহুদী হয় তাহলে তোমার পক্ষে জয়লাভ করা অসম্ভব| তোমার পতন শুরু হয়েছে এবং এভাবে তুমি নিশ্চিত শেষ হয়ে যাবে|” 14 সকলে মিলে যখন হামনকে এসব কথা বলছে তখন রাজার নপুংসক পরিচারকরা এসে ইষ্টেরের ভোজসভার জন্য হামনকে তাড়াতাড়ি আসতে বললেন|
1 অতঃপর রাজা ও হামন রাণী ইষ্টেরের ভোজসভায় এলেন| 2 ভোজসভার দ্বিতীয দিনে দ্রাক্ষারস পান করতে করতে রাজা আবার ইষ্টেরকে রশ্ন করলেন, “রাণী তুমি আমার কাছে কি য়েন চাইবে বলেছিলে? তুমি বলো তোমার কি প্রয়োজন, অবশ্যই তা তোমায় দেওয়া হবে| আমি তোমায় সব কিছু, এমনকি রাজ্যের অর্ধেকও দিতে রাজি!” 3 তখন রাণী ইষ্টের উত্তর দিলেন, “হে রাজন, যদি সত্যিই আপনি আমাকে ভালবেসে থাকেন এবং আমি যা চাই তা দিয়ে সন্তুষ্ট হতে চান, তবে আমার বিনীত প্রার্থনা আপনি অনুগ্রহ করে আমায় জীবন ভিক্ষা দিন| আমায় বাঁচতে দিন আর আমার স্বজাতিদেরও বাঁচতে দিন| এটুকুই শুধু আমি চাই| 4 একথা বলছি কারণ আমাকে ও আমার স্বজাতিদের বিনাশ, হত্যা ও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করবার জন্য বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে| যদি আমাদের নিছক এীতদাস হিসেবে বিক্রি করা হতো তাহলে আমি চুপ করেই থাকতাম কারণ আমি জানি য়ে তা রাজা মহারাজাদের উত্যক্ত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কোন ঘটনা নয়|” 5 রাজা অহশ্বেরশ তখন রাণীকে জিজ্ঞেস করলেন, “এ কাজ তোমার সঙ্গে কে করেছে? কে সেই ব্যক্তি যার এতো বড়ো স্পর্ধা য়ে তোমার লোকদের সঙ্গে এমন করে?” 6 ইষ্টের বললেন, “আমাদের সেই শএু হল এই পাপাত্মা হামন|”একথা শুনে রাজা ও রাণীর সামনে তখন হামন ভয়ে কেঁপে উঠলো| 7 রাজা ভীষণ রুদ্ধ হয়ে পানপাত্র পরিত্যাগ করে বাগানে চলে গেলেন| কিন্তু হামন রাণী ইষ্টেরের কাছে প্রাণ ভিক্ষা করার জন্য থেকে গেলেন| হামন প্রাণ ভিক্ষা করছিলেন কারণ তিনি জানতেন, রাজা নিশ্চয়ই ইতিমধ্যেই তাঁকে হত্যা করার কথা ঠিক করে ফেলেছেন| 8 রাজা যখন বাগান থেকে আবার সভাগৃহে ঢুকছেন, ঠিক তখনই তিনি দেখতে পেলেন, রাণী ইষ্টের কেদারায বিশ্রাম নিচ্ছেন এবং হামন রাণীর সামনে আছড়ে পড়লেন| রাজা তখন চিত্কার করে তাকে বললেন, “আমি এখনো রাণীর বাড়িতে আছি, আর আমার উপস্থিতিতেই তুমি রাণীকে আক্রমণ করছো?”একথা বলার প্রায সঙ্গে সঙ্গেই রাজভৃত্যরা এসে হামনকে হত্যা করল| 9 হর্বোণা নামে রাজার এক নপুংসক ভৃত্য বলল, “হামনের বাড়ির কাছে প্রায 75 ফুট দীর্ঘ একটি ফাঁসিকাঠ বানানো হয়েছে| মর্দখয়কে এর ওপরে ফাঁসি দেবার জন্য হামন এটা বানিয়েছে| মর্দখয় হল সেই ব্যক্তি য়ে রাজাকে হত্যা করার কুচক্রান্ত ফাঁস করে দিয়ে রাজাকে বাঁচিয়েছিল|”রাজা বললেন, “ওই কাঠে হামনকেই ফাঁসি দেওয়া হোক|” 10 তখন মর্দখযের জন্য হামনের নিজের হাতে বানানো ফাঁসিকাঠে (ভৃত্যরা) সকলে মিলে হামনকে ঝুলিয়ে দিল এবং এই ভাবে রাজার রাগ পড়লো|
1 সেদিনই রাজা অহশ্বেরশ রাণী ইষ্টেরকে হামনের যাবতীয় সম্পত্তি দিয়ে দিলেন| ইষ্টের রাজাকে জানালেন য়ে মর্দখয় সম্পর্কে তাঁর ভাই হয়| তারপর মর্দখয় রাজার সঙ্গে দেখা করতে এলেন| 2 রাজা হামনের থেকে য়ে আংটিটা ইতিমধ্যে ফেরত নিয়ে নিয়েছিলেন সেটি নিজের আঙুল থেকে খুলে এবার মর্দখয়কে দিলেন| এরপর ইষ্টের মর্দখয়কে হামনের যাবতীয় সম্পত্তির দায়িত্ব অর্পণ করলেন| 3 ইষ্টের এবার রাজার সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর পদতলে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে হামনের ইহুদীদের হত্যা করার নিষ্ঠুর পরিকল্পনা তাঁকে পরিত্যাগ করতে বললেন| ইহুদীদের ক্ষতি সাধনের জন্যই হামন এই পরিকল্পনা করেছিলেন| 4 রাজা তখন তাঁর সামনে সোনার রাজদণ্ডটি বাড়িয়ে দিলে, ইষ্টের উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, 5 “হে রাজন, যদি আপনি আমায় পছন্দ করে থাকেন এবং যদি খুশী হ’ন, তাহলে দয়া করে আমার জন্য এইটুকু করুন| আপনার যদি মনে হয়, আমি যা বলছি তা সঠিক এবং আপনি যদি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন তাহলে আগের নির্দেশটি খণ্ডন করার জন্য একটি নতুন নির্দেশ লিখে দিন| হামন, ইহুদীদের হত্যার নির্দেশ দিয়ে এর আগে প্রতিটি প্রদেশে খবর পাঠিয়েছে| 6 কিন্তু আমার পক্ষে আমার স্বজাতিদের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখা সম্ভব নয় বলেই আমি মহারাজের কাছে এই একান্ত মিনতি করছি|” 7 রাজা অহশ্বেরশ তখন রাণী ইষ্টের ও মর্দখয়কে উত্তর দিলেন, “য়েহেতু হামন ইহুদী বিদ্বেষী ছিল সেহেতু আমি ওর সমস্ত সম্পত্তি ইষ্টেরকে দিয়েছি| আমার সেনারা হামনকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিয়েছে| 8 এখন রাজার বকলমে, তোমাদের মতে ইহুদীদের সবচেযে বেশি সাহায্য হবে এমন ভাবে একটি নির্দেশ (তোমরা) লেখো|” তারপর রাজার আংটিটি দিয়ে সেটাতে শীলমোহর দাও| রাজার বকলমে লেখা এবং রাজার আংটিটি দিয়ে সীলমোহর করা আদেশ কখনো বাতিল করা যায় না|” 9 দ্রুত রাজার সমস্ত সচিবকে ডেকে পাঠানো হল| তৃতীয় মাসে অর্থাত্ সীবন মাসের 23 দিনে একাজ করা হল| এই সমস্ত সচিবরা তখন ইহুদীদের জন্য দেওয়া মর্দখয়ের নির্দেশগুলো লিখে নিল| সেই নির্দেশ ভারতবর্ষ থেকে কূশ দেশ পর্য়ন্ত বিস্তৃত 127 টি প্রদেশের প্রশাসক ও নেতা সকলকে পাঠানো হল| প্রত্যেকটি প্রাদেশিক ভাষায় ও সর্বজনবোধ্য ভাষায় নির্দেশগুলি লেখা হয়েছিল যাতে সবাই সহজে বুঝতে পারে| ইহুদীদের জন্য এই নির্দেশ তাদের নিজেদের ভাষায়, নিজস্ব বর্ণমালায লেখা হয়েছিল| 10 মর্দখয় বয়ং রাজা অহশ্বেরশের বকলমে এই নির্দেশগুলি লিখে, চিঠিগুলি রাজার আংটি দিয়ে সীলমোহর করে বন্ধ করলেন এবং দ্রুতগামী অশ্বারোহী বার্তাবাহকদের দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হল| এই সমস্ত ঘোড়াগুলোকে রাজার নিজের ব্যবহারের জন্যই বিশেষভাবে তৈরী করা হতো| 11 এই সমস্ত চিঠিতে, রাজা অহশ্বেরশের নির্দেশ বলা হল:প্রতিটি শহরে ইহুদীদের সমবেত ভাবে তাদের নিজেদের রক্ষা করার অধিকার দেওয়া হল| তাদের বা তাদের নারী ও শিশুদের যদি কোন দল আক্রমণ করে তাহলে তারা সেই শএুদের দলকে হত্যা ও ধ্বংস করতে পারবে এবং ইহুদীদের তাদের শএুদের সম্পদ লুঠ করার অধিকারও দেওয়া হল| 12 ইহুদীদের এই অধিকার দেওয়া হল দ্বাদশ মাস অর্থাত্ অদর মাসের 13 দিনে| রাজা অহশ্বেরশের সাম্রাজ্যের সমস্ত প্রদেশেই ইহুদীদের এই অধিকার দেওয়া হল| 13 এই চিঠির একটি প্রতিলিপি পাঠিয়ে প্রত্যেকটি রাজ্যে প্রত্যেকটি প্রদেশে একটি বিধি জারি করা হল| রাজ্যের সর্বত্র সবাইকে এই বিধির কথা জানিয়ে দেওয়া হল| যাতে ইহুদীরা সকলে ওই বিশেষ দিনটিতে তাদের সমস্ত শএুদের মোকাবিলা করার জন্য এবং প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে| 14 বার্তাবাহকরা রাজার নির্দেশে রাজার ঘোড়ায় চড়ে দ্রুত যাত্রা করল কারণ রাজা তাদের তাড়াতাড়ি যাবার জন্য আদেশ দিলেন| নির্দেশটি রাজধানীতেও টাঙিযে দেওয়া হল| 15 মর্দখয় রাজার কাছ থেকে চলে গেলেন| তিনি রাজার উপহার দেওয়া নীল ও সাদা রঙের একটি বিশেষ পোশাক ও সোনার বড় একটি মুকুট এবং বেগুনী লিনেন কাপড়ের আলখাল্লাও পরেছিলেন| 16 ইহুদীদের জন্য এটি ছিল একটি বিশেষ উত্সবের দিন| সকলেই খুব খুশী ও আনন্দিত ছিল এবং শূশনে আনন্দ ও খুশীর মধ্যে দিয়ে দিনটি উদ্য়াপন করা হল| 17 প্রত্যেকটি প্রদেশ, প্রতিটি নগরে রাজার নির্দেশ পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি ইহুদী পরিবার খুশী হয়ে উঠল| তারা উত্সব ও ভোজসভার তোড়জোড় শুরু করে দিল| ইহুদীদের ভয়ে অন্য অনেকে ইহুদী হয়ে গেল|
1 রাজার আগের দেওয়া আদেশ অনুযায়ী, দ্বাদশ মাসের অর্থাত্ অদর মাসের 13 দিনে ইহুদীরা তাদের শএুদের দ্বারা আএান্ত হবে বলে ঠিক হয়েছিল| ঐ দিনে ইহুদীদের শএুরা তাদের হারিয়ে দেবার আশা করেছিল| কিন্তু এখন পরিস্থিতি পালেট গেল| য়ে সমস্ত শএু তাদের ঘৃণা করতো, ইহুদীরা তাদের চেযে অনেক বেশী শক্তিশালী হয়ে উঠল| 2 রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যের সমস্ত প্রদেশে সর্বত্র ইহুদীরা তাদের শএুদের আক্রমণ করার জন্য তাদের শহরে মিলিত হল| এই সম্মিলিত আক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আর কোন দলের না থাকায়, সকলে ইহুদীদের ভয় পেতে শুরু করলো| 3 প্রত্যেকটি প্রদেশের রাজকর্মচারী, প্রশাসক ও নেতারা ইহুদীদের সাহায্য করতে লাগলো| এই সব গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মর্দখযের ভয়ে ইহুদীদের সাহায্য করছিল, 4 কারণ মর্দখয় ইতিমধ্যে রাজপ্রাসাদের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন| প্রত্যেকটি প্রদেশে সকলে মর্দখযের নাম ও তাঁর ক্ষমতার কথা জানতো| এবং মর্দখযের ক্ষমতা এমশঃ বেড়েই চলছিল| 5 ইহুদীরা তাদের সমস্ত শএুদের পরাজিত করলো| য়েসব লোকেরা তাদের ঘৃণা করতো তারা তাদের সঙ্গে যা খুশি তাই করলো| অনেককে তলোয়ার দিয়ে হত্যাও করলো| 6 শুধু রাজধানী শূশনেই ইহুদীরা 500 ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল| 7 ইহুদীরা হত্যা করেছিল পর্শন্দাথ, দল্ফোন, অস্পাথ, 8 পোরাথ, অদলিয়, অরীদাথ, পর্মস্ত, অরীষয়, অরীদয় এবং বযিষাথকে| 9 এরা হল হামনের দশ পুত্র| 10 হামন ছিল হম্মদাথার পুত্র| সে ছিল ইহুদীদের শএু| ইহুদীরা তার ছেলেদের হত্যা করেছিল কিন্তু তাদের সম্পত্তিতে হাত দেযনি| 11 রাজা যখন সেদিন রাজধানী শূশনে কত জনকে হত্যা করা হয়েছে জানতে পারলেন 12 তখন তিনি রাণী ইষ্টেরকে বললেন, “হামনের 10 পুত্র সহ 500 জনকে ইহুদীরা শূশনে হত্যা করেছে| এবার বলো রাজ্যের অন্যান্য প্রদেশে তুমি কি চাও? তুমি আমাকে যা বলবে আমি তাই করবো|” 13 ইষ্টের তখন রাজাকে বললেন, “যদি রাজা চান, তাহলে শূশনে ইহুদীরা আজ যা করেছে, আগামীকালও আবার তা করবার অনুমতি দিন| প্রতিশোধ নেবার জন্য ইহুদীদের আরও একদিন অনুমতি দিন| হামনের 10 জন পুত্রের দেহ ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া হোক|” 14 তখন রাজা শূশনে এই নির্দেশের মেয়াদ একদিন বাড়িয়ে দিলেন এবং হামনের 10 পুত্রের মৃতদেহও কথা মতো ঝুলিয়ে দেওয়া হল| 15 পরের দিন অর্থাত্ অদর মাসের 14 দিনের দিন ইহুদীরা শূশনে আরো 300 জনকে হত্যা করলো, তবে তাদের সম্পত্তি লুঠ করেনি| 16 একই সময়ে, অন্যান্য প্রদেশের ইহুদীরা তাদের নিজেদের রক্ষার জন্য শক্তি সঞ্চয় করতে একজোট হল| আক্রমণের সময় ইহুদীরা তাদের 75ণ000 জন শএুকে হত্যা করল| কিন্তু তারা তাদের শএুদের কোন কিছু লুঠ করেনি| 17 অন্যান্য প্রদেশগুলিতে এ ঘটনা ঘটেছিল অদর মাসের 13 দিনে| 14 দিনে ইহুদীরা সকলে খুশি মনে বিশ্রাম নিল এবং ঐ দিনটিকে একটি খুশির ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো| 18 শূশনের ইহুদীরা অদর মাসের 13 ও 14 তারিখ একত্রিত হবার পর অদর মাসের 15 তারিখ দিনটিকে খুশির ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো| 19 গ্রামেগঞ্জে ইহুদীরা অদর মাসের 14 তারিখে তারা পূরীম উত্সব উদযাপন করলো এবং দিনটিকে ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো| ওই দিন তারা একটি ভোজসভার আয়োজন করেছিল এবং একে অপরকে উপহার দিয়েছিল| 20 মর্দখয় এসব ঘনা লিখে রাখলো| তারপর রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যের কাছে ও দূরের সবকটি রাজ্যের সমস্ত ইহুদীদের মর্দখয় একটি চিঠি লিখলেন| 21 প্রতি বছর অদর মাসের 14 ও 15 তারিখ পূরীম উত্সব উদ্য়াপন করার অনুরোধ জানিয়ে মর্দখয় ইহুদীদের চিঠি লিখলেন| 22 ইহুদীদের ওই দিন দুটি পালন করতে বলা হল কারণ ওই দিনে ইহুদীরা তাদের শএুদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল| তাছাড়াও, ওই মাসটি ছিল উত্সব পালনের এংটি বিশেষ মাস, য়েহেতু তাদের দুঃখ ও বিষাদ, আনন্দ ও খুশির উত্সবে পরিণত হয়েছিল| মর্দখয় ওই দুটি দিত্থকে সর্বসাধারণ ছুটির দিন হিসেবে ভোজসভার মাধ্যমে পালন করতে এবং একে অপরকে ও দীন-দাঃখীকে উপহার দিয়ে পালন করতে লিখেছিলেন| 23 মর্দখয় যা লিখেছিলেন ইহুদীরা সকলেই তাতে সম্মত হল এবং য়ে আনন্দ উত্সব তারা শুরু করেছিল তা চালিযে যাবে বলে কথা দিল| 24 সমস্ত ইহুদীদের শএু অগাগীয হম্মদাথার পাত্র হামন ইহুদীদের ধ্বংস করার জন্য এংটি দিন বেছেছিলেন| তিনি ইহুদী নিধনের জন্য দিনটি বেছে ছিলেন ঘুঁটি চেলে| (সে সময়ে ‘ঘুঁটি’ কে বলা হোত ‘পূর’ তাই ছুটির দিনটির নাম দেওয়া হয়েছিল “পূরীম|”) 25 হামন এসব চএান্ত করেছিলেন কিন্তু রাণী ইষ্টের গিয়ে রাজার সঙ্গে কথা বলার পর রাজা নতুন নির্দেশ দিলেন| যার ফলে শুধু য়ে হামনের পরিকল্পিত চএান্ত নষ্ট হল তাই নয়, তার পরিবারেও অমঙ্গলের ছায়া নেমে এলো| হামন ও তার সন্তানদের ফাঁসি হল| 26 এসময়ে অক্ষকে বলা হত “পূরীম|” তাই এই ছুটির দিনটিকে বলা হোত “পূরীম|” সে কারণেই মর্দখযের নির্দেশ মেনে সেই থেকে ইহুদীরা প্রতি বছর এই দুটি দিন উদ্য়াপন করত| 27 28 তারা, তাদের প্রতি কি ঘতে দেখেছিল তা মনে রাখার জন্যই এই উত্সব পালন করা শুরু করলো| ইহুদীরা এবং য়ে সমস্ত লোকরা তাদের দলে মিশে গিয়েছিল, তারা সবাই প্রতিবছর সঠিক সময়ে, সঠিক ভাবে এই ছুটির দিন পালন করত| প্রত্যেক প্রজন্মের, প্রতিটি পরিবারই এই দুটি দিনের কথা মনে রাখে| প্রত্যেকটি অঞ্চলে, প্রতিটি নগরে এই উত্সব পালিত হত| ইহুদীরা কখনোই পূরীমের উত্সব উদ্য়াপন করা বন্ধ করবে না এবং তাদের উত্তরপুরুষরাও এই বিশেষ ছুটির দিনগুলিকে সব সময় মনে রাখবে| 29 অবীহযিলের কন্যা রাণী ইষ্টের ও মর্দখয় দুজনে মিলে পূরীম সম্পর্কে একটি আনুষ্ঠানিক পত্র রচনা করেন| এই দ্বিতীয চিঠির বৈধতা বোঝানোর জন্যই তাঁরা এই চিঠিতে রাজার সম্পূর্ণ অধিকার ব্যবহার করেন| 30 এরপর মর্দখয় চিঠিটি রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের 127 টি প্রদেশের সমস্ত ইহুদীদের পাঠিয়ে দেন| মর্দখয় লোকদের বলেন, ছুটির দিনটি শান্তি আনবে এবং লোকদের একে অপরকে বিশ্বাস করতে সাহায্য করবে| 31 মর্দখয় এই চিঠিগুলি লোকদের নির্দিষ্ট সময়ে পূরীম দিনগুলি চালু করতে বলার জন্য লিখেছিলেন| মর্দখয় ও রাণী ইষ্টের তাদের পরবর্তী উত্তরপুরুষদের এই পূরীম উত্সব উদ্য়াপনের জন্যই নির্দেশটি দিয়েছিলেন| অভিপ্রায় ছিল, ইহুদীদের অন্যান্য উত্সবের ও ছুটির দিনের মতো এই দিন দুটিকেও লোকে মনে রাখুক এবং অন্যান্য ছুটির দিন তারা য়েমন উপবাস করে, যা কিছু খারাপ ঘষ্টনা ঘটেছে তার জন্য়ে চোখের জল ফেলে, এই দিন দুটিও ঠিক সে ভাবে পালন করুক| 32 ইষ্টেরের চিঠির মাধ্যমে পূরীম উত্সবের রীতি-নীতিগুলিকে সরকারী মর্য়াদা দেওয়া হয় এবং এই ঘনাগুলি বইতে নথিভুক্ত করা হয়|
1 রাজা অহশ্বেরশের সময় রাজত্বের সবাইকে, এমন কি যারা দূরে বা সমুদ্রতীরে বসবাস করতো সবাইকেই কর দিতে হতো| 2 রাজা অহশ্বেরশের সমস্ত বিখ্যাত কীর্তিগুলি মাদিযা ও পারস্যের রাজাদের ইতিহাস বইগুলিতে পাওয়া যায়| রাজা মর্দখযের জন্য যা যা করেছিলেন সে সমস্ত ব্বিরণও এই সব ইতিহাস বইতে লেখা আছে| রাজা মর্দখয়কে এক জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত করেন| 3 মহারাজ অহশ্বেরশের পরেই গুরুত্বের দিক দিয়ে ছিল মর্দখযের স্থান| অন্যান্য ইহুদীরাও সকলে মর্দখয়কে খুবই সম্মান করতো| তারা মর্দখয়কে শ্রদ্ধা করতো কারণ মর্দখয় ইহুদীদের উন্নতির জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিলেন এবং সমস্ত ইহুদীদের জন্য শান্তি এনেছিলেন|
1 ঊষ দেশে ইয়োব নামে এক জন লোক বাস করতেন| ইয়োব একজন সত্ ও অনিন্দনীয় মানুষ ছিলেন| ইয়োব ঈশ্বরের উপাসনা করতেন এবং মন্দ কাজ করা থেকে বিরত থাকতেন| 2 ইয়োবের সাতটি ছেলে এবং তিনটি মেয়ে ছিল| 3 ইয়োবের 7,000টি মেষ, 3,000টি উট, 500 জোড়া বলদ, 500 স্ত্রী গাধা এবং অনেক দাসদাসী ছিল| ইয়োব ছিলেন পূর্বদেশের সব চেয়ে ধনী লোক| 4 তাদের বাড়ীতে তাঁর পুত্ররা পালা করে ভোজ সভার আয়োজন করত| এবং তারা তাদের বোনদের নিমন্ত্রণ করতো| 5 তাঁর পুত্রদের ভোজসভা শেষ হয়ে গেলে ইয়োব প্রত্যূষে ঘুম থেকে উঠতেন এবং তাঁর সন্তানদের প্রত্যেকের জন্য একটি করে হোমবলি উত্সর্গ করতেন| তিনি ভেবেছিলেন, “হয়তো আমার সন্তানরা মনে মনে ঈশ্বরকে অভিশাপ দিয়ে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন পাপ করেছে|” ইয়োব বরাবরই এই কাজ করেছেন যাতে তাঁর সন্তানদের পাপ ক্ষমা করা হয়| 6 তারপর সেই দিনটি এল য়েদিন দেবদূতেরাপ্রভুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন| শয়তানও দেবদূতদের সঙ্গে এসেছিল| 7 প্রভু তখন শয়তানকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথায় ছিলে?” শয়তান প্রভুকে উত্তর দিল, “আমি পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম|” 8 তারপর প্রভু শয়তানকে বললেন, “তুমি কি আমার দাস ইয়োবকে দেখেছো? পৃথিবীতে ইয়োবের মতো আর কোন লোকই নেই| ইয়োব এক জন সত্ এবং অনিন্দনীয় মানুষ| সে ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে|” 9 শয়তান উত্তর দিল, “নিশ্চয়! কিন্তু ইয়োব য়ে ঈশ্বরের উপাসনা করে তার য়থেষ্ট কারণ রযেছে! 10 আপনি তাকে, তার পরিবারকে এবং তার যা কিছু আছে সব কিছুকে সর্বদাই রক্ষা করেন| সে যা কিছু করে সব কিছুতেই আপনি তাকে সফলতা দেন| তার গবাদি পশুর দল ও মেষের পাল দেশে এমশঃ বেড়েই চলেছে| 11 কিন্তু তার যা কিছু রযেছে তা যদি আপনি ধ্বংস করে দেন আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, সে আপনার মুখের ওপরে আপনাকে অভিশাপ দেবে|” 12 প্রভু শয়তানকে বললেন, “ঠিক আছে, ইয়োবের যা কিছু আছে তা নিয়ে তুমি যা খুশী তাই কর| কিন্তু তার দেহে কোন আঘাত করো না|”তারপর শয়তান প্রভুর কাছ থেকে চলে গেল| 13 এক দিন ইয়োবের ছেলেমেয়েরা তাদের সব থেকে বড় দাদার বাড়ীতে দ্রাক্ষারস পান ও নৈশ আহার করছিল| 14 তখন এক জন বার্তাবাহক এসে ইয়োবকে সংবাদ দিল, “বলদগুলো জমিতে হাল দিচ্ছিল এবং স্ত্রী গাধাগুলো কাছাকাছি চরে ঘাস খাচ্ছিল, তখন 15 শিবাযীযেরা আমাদের আক্রমণ করে পশুদের ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং অন্য ভৃত্যদের তরবারি দিয়ে হত্যা করে| এক মাত্র আমিই পালাতে পেরেছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!” 16 যখন সেই বার্তাবাহক কথা বলছিল তখনই আরও এক জন বার্তাবাহক ইয়োবের কাছে এলো| দ্বিতীয় বার্তাবাহক ইয়োবকে বলল, “আকাশ থেকে বাজ পড়ে আপনার মেষ এবং ভৃত্যরা সব পুড়ে গিয়েছে| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!” 17 যখন সেই বার্তাবাহক কথা বলছিল তখন আরো এক জন বার্তাবাহক এলো| তৃতীয় বার্তাবাহক বলল, “কল্দীযরা তিন দল সৈন্যে ভাগ হয়েছিল| ওরা আমাদের আক্রমণ করে উটগুলিকে নিয়ে গিয়েছে! ওরা ভৃত্যদের তরবারি দিয়ে হত্যা করেছে| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!” 18 যখন তৃতীয় বার্তাবাহক কথা বলছিল তখন আরও এক জন বার্তাবাহক এলো| চতুর্থ বার্তাবাহক বলল, “আপনার ছেলেমেয়েরা তাদের বড় দাদার বাড়ীতে আহার করছিল ও দ্রাক্ষারস পান করছিল| 19 তখন মরুভূমি থেকে হঠাত্ই একটা ঝড় এসে বাড়ীটাকে ভেঙে দেয়| বাড়ীটা অল্পবয়সী লোকদের ওপরে ভেঙে পড়ে এবং তারা মারা যায়| এক মাত্র আমিই রক্ষা পেয়েছি| তাই আমি আপনাকে সংবাদটা দিতে এসেছি!” 20 যখন ইয়োব এইসব শুনলেন, তখন তিনি তাঁর বস্ত্র ছিঁড়ে ফেললেন এবং মাথা কামিযে ফেললেন| এভাবেই তিনি তাঁর শোক প্রকাশ করলেন| তারপর ইয়োব মাটিতে লুটিযে পড়লেন এবং ঈশ্বরের সামনে নত হলেন| 21 তিনি বললেন:“যখন আমি জন্মেছিলাম আমি নগ্ন ছিলাম, যখন আমি মারা যাবো তখনও আমি নগ্ন থাকব| প্রভু দেন এবং প্রভুই নিয়ে নেন| প্রভুর নামের প্রশংসা করো!” 22 এ সব কিছুই ঘটলো, কিন্তু ইয়োব কোন পাপ করেননি| ইয়োব একথা বলেননি য়ে ঈশ্বর কোন ভুল করেছেন|
1 আর একদিন দেবদূতরা প্রভুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন| শয়তানও তাদের সঙ্গে প্রভুর কাছে দেখা করতে এলো| 2 প্রভু শয়তানকে বললেন, “তুমি কোথায় ছিলে?”শয়তান প্রভুকে উত্তর দিলো, “আমি পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম এবং এদিক-ওদিক যাচ্ছিলাম|” 3 তখন প্রভু শয়তানকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি আমার দাস ইয়োবকে দেখেছো? পৃথিবীতে ইয়োবের মতো আর কোন লোক নেই| ইয়োব এক জন সত্ এবং অনিন্দনীয মানুষ| সে এখনও তার সততাকে ধরে আছে যদিও তুমি সম্পূর্ণ বিনা কারণে তাকে ধ্বংস করতে আমাকে প্ররোচিত করেছিলে|” 4 তখন শয়তান উত্তর দিল, “নিজেকে রক্ষা করার জন্য য়ে কেউই যা কিছু করতে পারে|নিজের জীবন রক্ষা করার জন্য এক জন তার সর্বস্ব দিয়ে দেবে| 5 আপনি যদি তার দেহে আঘাত করার জন্য আপনার শক্তিকে ব্যবহার করেন, তাহলে আমি জোর দিয়ে বলতে পারি য়ে সে মুখের ওপরই আপনাকে অভিশাপ দেবে|” 6 তখন প্রভু শয়তানকে বললেন, “ঠিক আছে, ইয়োব এখন তোমার ক্ষমতার মধ্যে| কিন্তু তুমি তাকে মেরে ফেলতে পারবে না|” 7 তখন শয়তান প্রভুর কাছ থেকে চলে গেল| শয়তান যন্ত্রণাদাযক ফোড়ায ইয়োবের পা থেকে মাথা পর্য়ন্ত ভরিয়ে দিল| 8 তখন ইয়োব ছাইযের গাদার মধ্যে বসলেন| একটা ভাঙা খোলামকুচি (সরা বা হাঁড়ির ভাঙা টুকরো) দিয়ে তিনি তাঁর ক্ষত চাঁছতে লাগলেন| 9 ইয়োবের স্ত্রী তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি এখনো ঈশ্বরের প্রতি সততায় অবিচল আছ? কেন তুমি ঈশ্বরকে অভিশাপদিচ্ছো না এবং মরছো না!” 10 ইয়োব তাঁর স্ত্রীকে উত্তর দিলেন, “তুমি এক জন নির্বোধ স্ত্রীলোকের মত কথা বলছো! ঈশ্বর আমাদের ভালো জিনিস দেন এবং আমরা তা গ্রহণ করি| সেই ভাবে আমাদের, তাঁর প্রদত্ত দুঃখ কষ্টও গ্রহণ করা উচিত্|” এই সব ঘটনা ঘটলো, কিন্তু ইয়োব ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন কথা বলে কোন পাপ করলেন না| 11 ইয়োবের তিনজন বন্ধু হলেন তৈমনীয ইলীফস, শূহীয বিল্দদ ও নামাথীয সোফর| ইয়োবের প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা তিন বন্ধুই শুনলেন| তাঁরা তিন জনে বাড়ী থেকে বেরিয়ে এক জায়গায় মিলিত হলেন| তাঁরা ইয়োবের কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানাতে ও সান্ত্বনা জানাতে রাজী হলেন| 12 কিন্তু তিন বন্ধু ইয়োবকে অনেক দূর থেকে দেখলেন| তাঁরা তাঁকে চিনতেই পারছিলেন না| তাঁরা উচ্চস্বরে কাঁদতে শুরু করলেন| তাঁরা নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেললেন এবং নিজেদের মাথার ওপরে শূন্যে ধূলো ছুঁড়লেন| 13 তারপর সেই তিন বন্ধু ইয়োবের সঙ্গে সাতদিনসাতরাত বসে রইলেন| কেউই ইয়োবের সঙ্গে কোন কথা বলেন নি কারণ তাঁরা দেখেছিলেন ইয়োব অতিরিক্ত কষ্ট পাচ্ছিলেন|
1 তারপর ইয়োব মুখ খুললেন এবং য়ে দিন তিনি জন্মেছিলেন সেই দিনটিকে নিন্দা করলেন| 2 তিনি বললেন:“যে দিনে আমি জন্মেছিলাম সেদিন চিরদিনের জন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক| য়ে রাত্রি বলে উঠেছিলো, ‘একটি ছেলে গর্ভে এসেছে!’ সে রাত্রি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক| 3 4 “সে দিন য়েন অন্ধকারে ঢেকে যায়| সেই দিনের কথা ওপরে ঈশ্বর য়েন ভুলে যান| সেই দিনে য়েন আলো প্রকাশ না হয়| 5 বিষাদ এবং মৃত্যুর অন্ধকার য়েন সেই দিনকে নিজেদের বলে দাবী করে| মেঘ য়েন সেই দিনকে ঢেকে লুকিয়ে রাখে| তিক্ত বিষাদ য়েন সেই দিনটিকে গ্রাস করে| 6 অন্ধকার য়েন সেই রাত্রিকে নিয়ে যায়| সেই দিনটিকে পঞ্জিকা থেকে বাদ দিয়ে দাও| সেই রাত্রিকে কোন মাসের মধ্যে গণনা কর না| 7 সেই রাত্রি য়েন কোন কিছু উত্পন্ন না করে| সেই রাতে য়েন কোন খুশীর শব্দ শোনা না যায়| 8 যারা দিনকে অভিশাপ দেয়এবং যারা লিবিয়াথনকে জাগিয়ে তুলতে পারদর্শী, তারা য়েন সেই রাতটিকে অভিশাপ দেয়| 9 সেই দিনের প্রভাতী নক্ষত্র য়েন অন্ধকার হয়ে যায়| সেই রাত্রি য়েন প্রভাতের আলোর জন্য অপেক্ষা করে কিন্তু সেই সকাল য়েন কোন দিন না আসে| সেই দিন য়েন সূর্য়ের প্রথম রশ্মি কোনদিন না দেখে| 10 কেন? কারণ সেই রাত্রি আমাকে জন্মাতে বাধা দেয় নি| সেই রাত্রি এই সব সমস্যা দেখা থেকে আমাকে বিরত করে নি| 11 যখন আমি জন্মেছিলাম, তখনই আমি মরে গেলাম না কেন? কেন আমি আমার মাতৃজঠর থেকে বেরিয়ে এসেই মারা গেলাম না? 12 কেন আমার মা আমাকে নির্বিক্ জন্ম দিয়েছি-লেন? আমার মায়ের স্তন কেন আমায় দুধ পান করিযেছিলো? 13 এই ঘটনাগুলি যদি না ঘটত তাহলে আমি এখন শাযিত থাকতে পারতাম| আমি শান্তিতে থাকতাম| আমি ঘুমিয়ে থাকতে পারতাম এবং বিশ্রাম পেতাম| 14 এই পৃথিবীর য়ে সব রাজা ও মন্ত্রীরা ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরীগুলি নিজেদের জন্য পুননির্মাণ করেছেনআমি তাঁদের সঙ্গে থাকতে পারতাম| 15 অথবা আমি সেই রাজপুত্রদের সঙ্গে থাকতে পারতাম যাদের কাছে সোনা ছিল এবং যারা তাদের বাড়ীগুলি রূপায় ভর্ত্তি করে রাখত| 16 আমি কেন সেই শিশুর মত হলাম না য়ে জন্মের সময়ই মারা যায় এবং যাকে মাটিতে কবর দেওয়া হয়| য়ে শিশু দিনের আলো দেখেনি আমি যদি সেই শিশুর মত হতাম! 17 দুষ্ট লোকরা যখন কবরে থাকে তখন তারা কোন অশান্তি অনুভব করে না| যারা পরিশ্রান্ত, তারা কবরে বিশ্রাম খুঁজে পায়| 18 এমনকি এীতদাসরাও কবরের মধ্যে সকলে মিলে স্বচ্ছন্দে থাকে| এীতদাস তাড়কদের চিত্কার তারা শুনতে পায় না| 19 কবরে সব রকমের লোকই রযেছে- গুরুত্বপূর্ণ লোক এবং যারা গুরুত্বপূর্ণ নয় তারাও রযেছে| এমনকি এক জন দাসও তার প্রভুর কবল থেকে মুক্ত| 20 “য়ে মানুষ ভুগছে তাকে আলো দেখান কিজন্য? যার জীবন তিক্ত কেন তাকে আযু দেওয়া হয়? 21 য়ে লোক মরতে চায়, কিন্তু মৃত্যু আসে না, সেই দুঃখী লোক গুপ্ত সম্পদের চেয়েও বেশি করে মৃত্যুকে খোঁজে| 22 ঐ লোকরা ওদের কবর খুঁজে পেলে অত্যন্ত খুশী হবে এবং আনন্দে গান গাইবে| 23 যারা তাদের জীবনের পথ দেখতে পায় না তাদের কেন জীবন দেওয়া হয়? ঈশ্বর কেন তাদের মরণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখেন? 24 আমার দীর্ঘশ্বাসই আমার খাদ্য| আমার গুমরানি জলের মত গড়িযে পড়ে| 25 আমি যার ভয়ে ভীত ছিলাম আমার ঠিক তাই ঘটেছে| যা আমার আতঙ্ক ছিল, আমার বিরুদ্ধে তাই ঘটেছে| 26 আমি শান্তি খুঁজে পাইনি| আমি স্বস্তি খুঁজে পাইনি| আমি শুধু মাত্র অশান্তি খুঁজে পেয়েছি| আমি কষ্টে পড়েছি!”
1 তৈমনীয় ইলীফস উত্তর দিলো:“যদি কেউ তোমার সঙ্গে কথা বলতে চায়, তুমি কি অধৈর্য় হবে? কিন্তু তোমার সঙ্গে কথা বলা থেকে কে আমাকে থামাতে পারে? 2 3 ইয়োব, তুমি অনেক লোককে শিক্ষা দিয়েছো| দুর্বলকে তুমি শক্তি দিয়েছো| 4 যারা প্রায় পড়ে যাচ্ছিল তুমি তাদের উত্সাহিত করেছ| যাদের হাঁটু ভেঙ্গে আসছিল তুমি তাদের সবল করেছ| 5 কিন্তু এখন তুমি সমস্যায় পড়েছ এবং তুমি নিরুত্সাহ হয়েছো| সমস্যা তোমায় আঘাত করেছে এবং তুমি বিচলিত| 6 ঈশ্বরের প্রতি তোমার শ্রদ্ধা কি তোমাকে এই পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাস য়োগায না? তোমার সরল ও সত্ জীবন কি তোমাকে এই পরিস্থিতিতে আশা দেয় না? 7 ইয়োব, অন্তত একজন নির্দোষ লোকের নাম কর য়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে| আমাকে ভালো লোকদের দেখাও যারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল| 8 আমি কিছু সমস্যা সৃষ্টিকারী মানুষ দেখেছি যারা অন্যের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে| কিন্তু তারা সর্বদা শাস্তি পেয়েছে| 9 ঈশ্বরের শাস্তি ঐ লোকদের হত্যা করেছে| ঈশ্বরের ক্রোধ তাদের ধ্বংস করেছে| 10 মন্দ লোকরা সিংহের মত গর্জন ও গর্গর্ করে| কিন্তু ঈশ্বর ঐ মন্দ লোকদের চুপ করিযে দেন এবং ঈশ্বর তাদের দাঁত ভেঙে দেন| 11 হ্যাঁ, ঐ মন্দ লোকরা, সেই সিংহের মত যারা হত্যা করার জন্য কোন প্রাণী পায় না| তারা মারা যায় এবং তাদের পুত্ররা যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায়| 12 “গোপনে আমার কাছে এক বার্তা এসেছে| আমি তা নিজের কানে শুনেছি| 13 সে ছিল একটি দুঃস্বপ্নেব মত য়েটা লোকরা গভীরভাবে ঘুমিয়ে পড়লে আসে| 14 আমি ভয়ে কেঁপে উঠেছিলাম | আমার হাড়গোড় পর্য়ন্ত কেঁপে উঠেছিল| 15 আমার মুখের সামনে দিয়ে একটা আত্মা চলে গেল| আমার সমস্ত শরীর রোমাঞ্চিত হল| 16 সেই আত্মা আমার সামনে থেমে গেল| কিন্তু আমি দেখতে পাইনি তা কি ছিল| আমার চোখের সামনে কিছু একটা অবয়ব ছিল মাত্র এবং চারদিক নিস্ত? ছিল| তারপর আমি একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম: 17 ‘কোন লোক ঈশ্বরের চেয়ে বেশী সঠিক হতে পারে না| কোন ব্যক্তি তার স্রষ্টার চেয়ে বেশী শুদ্ধ হতে পারে না| 18 দেখ, ঈশ্বর তাঁর স্বর্গের দাসদের প্রতিও নির্ভর করতে পারেন না| ঈশ্বর তাঁর দূতদের মধ্যেও ভুল এুটি দেখেন| 19 তাই সত্যিই মানুষ নশ্বর| ধূলার ভিতযুক্ত মাটির বাড়িতে যারা বাস করে তাদের ঈশ্বর কত কম বিশ্বাস করেন! ঈশ্বর পতঙ্গের মত তাদের পিষে ফেলেন| মানুষ মাটির ঘরে বাস করে (মানুষের দেহ মাটির তৈরী)| সেই মাটির ঘরের ভিত ধূলায বা পাঁকের মধ্যে থাকে| একটা পতঙ্গের থেকেও সহজে তাদের দেহ নষ্ট করে ফেলা যায়! 20 সূর্য়োদয় থেকে সূর্য়াস্ত পর্য়ন্ত মানুষ টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙেই চলেছে| য়েহেতু তারা শুধুই মাটির তৈরী সেহেতু তারা চিরতরে বিনষ্ট হয়| 21 তাদের তাঁবুর দড়ি খুলে নেওয়া হয় এবং প্রজ্ঞাবিহীন অবস্থায় তারা মারা যায়|’
1 “ইয়োব, তুমি যদি চাও তো চিত্কার কর, কিন্তু কেউ তোমার ডাকে সাড়া দেবে না! তুমি কোন পবিত্র সত্তার দিকে ফিরবে? 2 এক জন বোকা লোকের ক্রোধই তাকে হত্যা করবে| এক জন বোকা লোকের প্রচণ্ড আবেগই তাকে হত্যা করবে| 3 আমি এক জন বোকা লোককে দেখেছিলাম য়ে ভেবেছিল সে নিরাপদে আছে| কিন্তু সে হঠাত্ মারা গেল| 4 তার ছেলেদের সাহায্য করার জন্য কেউই ছিল না| নগরদ্বারেকেউ তাদের লাঞ্ছনা থেকে রক্ষা করে নি| 5 ক্ষুধিত লোকরা তার সব শস্য খেয়ে নিয়েছিল| কাঁটাঝোপের মধ্যে য়ে শস্য গজিযে উঠেছিলো, এই ক্ষুধিত লোকরা তাও খেয়ে নিয়েছিল| তাদের যা কিছু ছিল, লোভী লোকরা সবই নিয়ে গিয়েছিল| 6 শুধুমাত্র ধূলো থেকে খারাপ সময় উঠে আসে না| সমস্যা হঠাত্ করে ভূমি ফুঁড়ে জন্মায় না| 7 কিন্তু মানুষ সমস্যার সম্মুখিন হতে বাধ্য|ঠিক য়েমন আগুন থেকে স্ফুলিঙ্গ ওড়ে| 8 “কিন্তু ইয়োব, আমি যদি তুমি হতাম, আমি ঈশ্বরকে খুঁজতাম এবং ঈশ্বরকে সম্বোধন করে আমার কথা বলতাম| 9 ঈশ্বর মহান কাজগুলি করেন যা কেউ পুরোপুরি বুঝতে পারে না| তিনি এত বিস্মযকর কাজ করেন য়ে তাদের গোনা যায় না| 10 ঈশ্বর পৃথিবীতে বৃষ্টি পাঠান| তিনি জমির জন্য জল পাঠান| 11 ঈশ্বর এক জন বিনযী লোককে উন্নীত করেন| অতএব যারা বিলাপরত তারা বিজয়প্রাপ্তহয়| 12 ঈশ্বর চালাক ও মন্দ লোকদের ফন্দি বানচাল করে দেন যাতে তাদের পরিকল্পনা সফল না হয়| 13 ঈশ্বর, চালাক লোকদেরও তাদের নিজেদের ফাঁদেই ধরেন| তাই, সেই সব চালাকিও সফল হয় না| 14 ওরা দিনের বেলায রাতের সম্মুখীন হয় এবং দিনের বেলাতেই এমন করে হাতড়ে বেড়ায়, য়েন রাত হয়ে গেছে| 15 ঈশ্বর দরিদ্র লোকদের মৃত্যু থেকে রক্ষা করেন| দুর্জন লোকদের শক্তি থেকে তিনি দরিদ্র লোকদের রক্ষা করেন| 16 তাই দরিদ্র লোকদের আশা আছে| অধর্ম তার মুখ বন্ধ করে| 17 “যার দোষ ঈশ্বর সংশোধন করে দেন সে তো ঈশ্বরের আশীর্বাদপুত! তাই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যখন তোমায় শাস্তি দেন তখন কোন অভিয়োগ করো না| 18 ঈশ্বর য়ে আঘাত দেন, তিনি নিজেই সে আঘাতের শুশ্রূষা করেন| হয়তো তিনি কাউকে আঘাত করেন কিন্তু তাঁর হাত আরোগ্যও দান করে| 19 ঈশ্বর তোমাকে সব সময়ই উদ্ধার করবেন, যতবারই সংকট আসুক না কেন, সেটা তোমাকে আঘাত করবে না| 20 যখন দুর্ভিক্ষ হবে তখন ঈশ্বর তোমায় মৃত্যু থেকে রক্ষা করবেন| যখন যুদ্ধ হবে তখন ঈশ্বর তোমায় মৃত্যু থেকে রক্ষা করবেন| 21 ঈশ্বর তোমাকে অপবাদ থেকে রক্ষা করবেন| বিপর্য়য এলে তুমি ভয় পাবে না| যখন মন্দ কিছু ঘটবে তখন তোমার ভয়ের কোন কারণ নেই| 22 দুর্ভিক্ষ ও ধ্বংসের দিনগুলোকে তুমি উপহাস করবে| তুমি বন্য জন্তুদের ভয় পাবে না| 23 মনে হচ্ছে য়েন বন্য জন্তু ও মাঠের পাথরের সঙ্গে তোমার একটি শান্তি চুক্তি রযেছে| এমনকি বন্য পশুরাও তোমার সঙ্গে শান্তিতে থাকবে| 24 তুমি জানবে য়ে তোমার বাড়ি শান্তিতে আছে| তোমার সম্পত্তির হিসাব করে দেখবে কোন কিছুই খোযা যায় নি| 25 তুমি জানবে য়ে তোমার প্রচুর সন্তানাদি হবে| পৃথিবীতে যত ঘাস আছে তোমার উত্তরপুরুষদের সংখ্যাও ততগুলোই হবে| 26 তুমি সেই গমের মত হবে য়ে গম ফসল কাটা পর্য়ন্ত বাড়তে থাকে| হ্যাঁ, বৃদ্ধ বয়স পর্য়ন্ত তুমি পূর্ণ শক্তিতে বেঁচে থাকবে| 27 “ইয়োব, এই বিষয়গুলো আমরা অনুধাবন করেছি এবং আমরা জানি সেগুলি সত্যি| তাই ইয়োব, আমাদের কথা শোন, এবং তোমার নিজের জন্য সেগুলো শেখো|”
1 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন: “আমি যদি আমার ক্রোধক দাঁড়িপাল্লার এক দিকে এবং দুঃখকে অন্য দিকে রাখতে পারতাম তাহলে তাদের ওজন একই হত| 2 3 তাদের ওজন সমুদ্রের সব কটি বালুকণার চেয়েও বেশী| এই কারণেই আমার বাক্য এত কর্কশ| 4 সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের তীর আমার দেহে বিদ্ধ হয়েছে| আমার জীবন ঐ সব তীরের বিষ পান করছে! ঈশ্বরের ভয়ঙ্কর অস্ত্রসমূহ আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সারি দিয়ে রাখা আছে| 5 যখন কোন রকম মন্দ কিছু না ঘটে তখন তোমার কথাগুলো বলা সহজ| এমনকি বুনো গাধা যখন খাওয়ার ঘাস পায়, সে কোন অভিয়োগ করে না| এমনকি, যখন খাদ্য থাকে, তখন কোন গরুও অভিয়োগ করে না| 6 স্বাদহীন কোন বস্ু কি লবণ ছাড়া খাওয়া যায়? ডিমের সাদা অংশের কি কোন স্বাদ আছে? না! 7 আমি এরকম খাবার স্পর্শ করতে অস্বীকার করি, ঐ ধরণের খাদ্য আমার কাছে পচা খাবারের মত| এবং তোমার কথাগুলো আমার কাছে সেই রকমই স্বাদহীন বলে মনে হচ্ছে| 8 “যা চেয়েছি তা যদি পেতাম! আমি যা সত্যিই চাই তা যদি ঈশ্বর দিতেন! 9 আমি চেয়েছিলাম, ঈশ্বর আমায় ধ্বংস করুন| এগিয়ে এসে আমায় হত্যা করুন| 10 যদি তিনি আমায় হত্যা করেন, আমি স্বস্তি পাবো, আমি সুখী হব: এত যন্ত্রণা সত্ত্বেও আমি সেই পবিত্রতমের আদেশ পালন করা থেকে বিরত হই নি| 11 “আমার সব শক্তি চলে গেছে, তাই আমার বেঁচে থাকার কোন আশা নেই| আমি জানি না আমার কি হবে| তাই আমার ধৈর্য়্য় ধরার কোন কারণ নেই| 12 আমি পাথরের মত শক্ত নই| আমার দেহ পিতল দিয়ে তৈরী নয়| 13 আত্মনির্ভর হবার মত আমার কোন শক্তি নেই| কেন? কারণ আমার কাছ থেকে সাফল্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে| 14 “যদি কেউ সমস্যায় পড়ে, তার প্রতি তার বন্ধুর সদয হওয়া উচিত্| যদি কেউ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দিক থেকেও মুখ ফেরায, তবুও তার প্রতি তার বন্ধুর বিশ্বস্ত থাকা উচিত্| 15 কিন্তু তুমি, আমার ভাই, তুমি বিশ্বস্ত ছিলে না| আমি তোমার প্রতি নির্ভর করতে পারিনি| তুমি সেই ঝর্ণার মত যা কখনও প্রবাহিত হয় আবার কখনও প্রবাহিত হয় না| তুমি সেই ঝর্ণার মত 16 যা বরফে জমে গেলে বা বরফ গলা জলে ভরে গেলে উপচে পড়ে| 17 এবং যখন আবহাওয়া শুষ্ক ও গরম থাকে তখন তার জল প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়| তার ধারাগুলো লুপ্ত হয়| 18 বণিকের দল তাদের রাস্তা থেকে সরে যায় এবং তারা মরুভূমিতে বিলুপ্ত হয়| 19 টেমার বণিকরা জলের অন্বেষণ করলো| শিবার পর্য়টকরা আশা নিয়ে অপেক্ষা করলো| 20 তারা নিশ্চিত ছিল য়ে তারা জল পাবেই কিন্তু তারাও হতাশ হল| 21 এখন, তুমি সেই সব ঝর্ণার মত| আমার দুর্দশা দেখে তুমি ভীত হয়েছো| 22 আমি কি তোমার সাহায্য চেয়েছি? না চাই নি! কিন্তু তুমি সহজেই তোমার উপদেশ দিলে! 23 আমি কি তোমাকে বলেছি, ‘আমাকে শএুর হাত থেকে রক্ষা কর! নৃশংস লোকের হাত থেকে আমায় রক্ষা কর?’ 24 “তাই, এখন আমায় শিক্ষা দাও, আমি চুপ করে থাকবো| দেখিয়ে দাও আমি কি ভুল করেছি| 25 সত্-বাক্যই শক্তিশালী| কিন্তু তোমার যুক্তি কোন কিছুই প্রমাণ করে না| 26 তুমি কি আমার সমালোচনা করার পরিকল্পনা করেছ? তুমি কি আরও ক্লান্তিকর কথা বলবে? 27 তুমি একজন পিতৃ-মাতৃহীনের সম্পত্তি নিয়ে জুযা খেলতে পারো| তুমি তোমার প্রতিবেশীকেও বিক্রি করে দিতে পারো| 28 কিন্তু এখন, আমার মুখ দেখে বোঝার চেষ্টা কর| আমি তোমার কাছে মিথ্যা বলবো না| 29 তোমার সিদ্ধান্তগুলি পুনর্বিবেচনা কর| অন্যায় বিচার করো না| পুনরায বিবেচনা কর কারণ এ ব্যাপারে আমি নির্দোষ| আমি কোন ভুল করিনি| 30 আমি মিথ্যা বলছি না| আমি কি পচা জিনিসের স্বাদ বুঝি না?”
1 ইয়োব বললেন,“পৃথিবীতে মানুষকে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়| তাদের জীবন এক জন কঠোর পরিশ্রমী শ্রমিকের জীবনের মত| 2 মানুষ সেই এীতদাসের মত, য়ে প্রচণ্ড গরমের দিনে সারাদিন পরিশ্রমের পর একটু শীতল ছায়া চায়| মানুষ এক জন ভাড়াটে শ্রমিকের মত য়ে বেতনের দিনের জন্য অপেক্ষা করে| 3 তাই, ঠিক একটি এীতদাস ও শ্রমিকের মত আমাকে মাসের পর মাস নৈরাশ্য দেওয়া হয়েছে| আমাকে দুঃখভরা রাতগুলি গুনে দেওয়া হয়েছে| 4 যখন আমি শুই, আমি ভাবি, ‘আবার কতক্ষণ পরে জেগে উঠবো?’ রাত্রি প্রলম্বিত হয়| সূর্য় ওঠা পর্য়ন্ত আমি ছটফট করি| 5 আমার দেহ কৃমিকীট ও আবর্জনার মণ্ড দিয়ে আবৃত| আমার চামড়া ফেটে যায় ও রস গড়ায| 6 “আমার জীবন, তাঁতির মাকুর থেকেও দ্রুত অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে| এবং আশাহীন ভাবে আমার জীবন শেষ হচ্ছে| 7 স্মরণে রেখো, আমার জীবন একটি নিশ্বাস মাত্র| আর কখনও আমি ভালো কিছু দেখবো না| 8 এবং যদিও তুমি এখন আমায় দেখছ তুমি আমাকে দেখবে না, তুমি আমাকে খুঁজতে থাকবে কিন্তু আমি থাকবো না| 9 মেঘ চলে যায় এবং বিলুপ্ত হয়| একই ভাবে, এক জন লোক কবরে চলে যায়| সে আর ফিরে আসে না| 10 তার পুরোনো বাড়ীতে সে আর কখনই ফিরে আসবে না| তার বাড়ী তাকে আর চিনতে পারবে না| 11 “তাই আমি চুপ করে থাকবো না! আমি কথা বলবো! আমার আত্মা কষ্ট পাচ্ছে! আমি অভিয়োগ করবো কারণ আমার আত্মা বীতশ্রদ্ধ হয়ে গেছে| 12 ঈশ্বর, কেন আপনি আমায় পাহারা দিচ্ছেন? আমি কি সমুদ্র বা সমুদ্র দানব? 13 যখন আমি বলি আমার বিছানা আমাকে আরাম দেবে, আমার চৌকি আমাকে বিশ্রাম ও শান্তি দেবে 14 তখন স্বপ্ন দেখিয়ে আপনি আমায় ভয় পাওয়ান| ভযাবহ স্বপ্ন দর্শন করিযে আপনি আমায় ভীত করেন| 15 তাই ফাঁসি যাওয়াটাই আমি এখন শ্রেয় বলে মনে করি| এমন ভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে আমার মরে যাওয়াই ভাল| 16 আমি আমার জীবনকে বাতিল করে দিয়েছিলাম| আমি চিরদিন বেঁচে থাকতে চাই না| আমাকে একা থাকতে দিন| আমার জীবন শুধুই একটি বয়ে যাওয়া নিঃশ্বাস| 17 ঈশ্বর, কেন মানুষ আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ? কেন আপনি তাকে এত লক্ষ্য করেন? 18 কেন প্রতিদিন সকালে আপনি মানুষ পরীক্ষা করেন? কেন প্রতিমূহুর্তে লোকদের যাচাই করেন? 19 ঈশ্বর, আপনি কি আমার উপর থেকে আপনার দৃষ্টি সরিয়ে নেবেন না? আপনি কি এক পলকের জন্যও আমাকে একা ছাড়বেন না? 20 ঈশ্বর, আপনি মানুষের ওপর নজর রাখেন| আমি অন্যায় করেছি, ভাল| আমি আপনার প্রতি কি করতে পারি? কেন আমি আপনার বোঝা হয়ে উঠেছি? 21 অপরাধ করার জন্য কেন আপনি আমায় ক্ষমা করছেন না? আমার পাপের জন্য কেন আপনি আমায় ক্ষমা করছেন না? আমি খুব তাড়াতাড়ি মরে গিয়ে কবরে যাবো| তখন আপনি আমায় খুঁজবেন, কিন্তু আমি তখন চলে যাবো|”
1 তখন শূহীর বিল্দদ উত্তর দিলেন, 2 “আর কতক্ষণ তুমি ঐ ভাবে কথা বলবে? তোমার কথা ঝোড়ো বাতাসের মতই বয়ে চলেছে| 3 ঈশ্বর সর্বদাই সত্ পথে থাকেন| যা সঠিক, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তা কখনই পরিবর্তিত করেন না| 4 যদি তোমার সন্তানরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করে থাকে, তাহলে ঈশ্বর তাদের পাপের জন্য শাস্তি দিয়েছেন| 5 কিন্তু এখন ইয়োব, তুমি যদি ঈশ্বরের এবং সর্বশক্তিমানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, 6 যদি তুমি সত্ ও শুচি থাকো, তিনি শীঘ্রই এসে তোমাকে সাহায্য করবেন| তোমার য়েমন গৃহটি প্রাপ্য তেমনটিই তিনি তোমাকে ফিরিযে দেবেন| 7 তোমার য়ে বিপুল উন্নতি হবে, তার কাছে, আগে তোমার যা ছিল, তা সামান্য মনে হবে| 8 “বয়স্ক লোকদের জিজ্ঞাসা করে দেখ| খুঁজে দেখ তাদের পূর্বপুরুষরা কি শিক্ষা পেয়েছে? 9 মনে হচ্ছে য়েন আমরা গতকাল জন্মেছি| জানার পক্ষে আমরা একেবারেই অপক্ক| এই পৃথিবীতে আমাদের জীবন ছায়ার মতোই ক্ষণস্থায়ী|” 10 হয়তো বয়স্ক লোকরা তোমায় শিক্ষা দিতে পারেন| হয়তো বা, তাঁরা যা শিখেছেন তা তোমাকে শেখাতে পারেন|” 11 বিল্দদ বললেন, “শুকনো জমিতে কি ভূর্জগাছ বড় হতে পারে?” জল ছাড়া কি এরস গাছ বাড়তে পারে? 12 না, যদি জল শুকিয়ে যায়, তাহলে তারাও শুকিয়ে যাবে| তারা এত ছোট হয়ে যাবে য়ে তাদের কেটে ব্যবহার করাই মুস্কিল হবে| 13 যারা ঈশ্বরকে ভুলে যায় তারাও ঐ নল-খাগড়ার মতোই| ঈশ্বরহীন মানুষের আশা বিনষ্ট হয়| 14 ওই লোকের নির্ভর করার কোন জায়গা নেই| তার নিরাপত্তা মাকড়সার জালের মতোই দুর্বল| 15 যদি কোন লোক মাকড়সার জালের ওপর নির্ভর করে তাহলে তা ভেঙে যায়| সে মাকড়সার জাল ধরে, কিন্তু সেই জাল তাকে আশ্রয় দেয় না| 16 সেই লোকটি সূর্য়ালোকের মধ্যে একটি ভেজা গাছের মত| তার ডালপালা সারা বাগানে ছড়িয়ে পড়ে| 17 পাথরের চাঁইযের মধ্যে সে তার শিকড় ছড়িয়ে রাখে, পাথরের মধ্যেই সে তার শিকড় গজায| 18 কিন্তু যদি গাছটি তার জায়গা থেকে সরে যায়, গাছটি মরে যাবে এবং কেউ জানবে না য়ে গাছটি কোন দিন ঐখানে ছিলো| 19 কিন্তু গাছটি যতদিন বেঁচে ছিল তত দিন জীবন উপভোগ করছিল এবং অন্যান্য গাছগুলো এর জায়গায় জন্মাবে| 20 ভালো লোকদের ঈশ্বর কখনই পরিত্যাগ করেন না| তিনি দুষ্ট লোকদের সাহায্য করেন না| 21 ঈশ্বর তোমার মুখ হাসিতে ভরিয়ে দেবেন এবং তোমার ঠোঁট আনন্দ ধ্বনিতে পূর্ণ করবেন| 22 কিন্তু তোমার শএুদের মুখ লজ্জায় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে| এবং দুষ্ট লোকদের ঘরবাড়ী ধ্বংস হয়ে যাবে|”
1 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন: 2 “হ্যাঁ, আমি জানি তুমি যা বলছো তা সত্য| কিন্তু এক জন মানুষ ঈশ্বরের সঙ্গে যুক্তি-তর্কে কি ভাবে জিততে পারে? 3 এক জন মানুষ ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে পারে না! ঈশ্বর 1,000টা প্রশ্ন করতে পারেন কিন্তু কোন মানুষ তার একটা প্রশ্নরও উত্তর দিতে পারে না! 4 ঈশ্বর প্রচণ্ড জ্ঞানী এবং তাঁর বিপুল ক্ষমতা| কেউই ঈশ্বরের সঙ্গে অক্ষত হয়ে লড়াই করতে পারে না| 5 ঈশ্বর যখন রোধন্বত হন তখন পর্বতগুলো কি হচ্ছে বোঝবার আগেই তিনি পর্বতদের সরিয়ে দেন| 6 পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেবার জন্য ঈশ্বর ভূমিকম্প পাঠান| ঈশ্বর পৃথিবীর ভিত পর্য়ন্ত কাঁপিয়ে দেন| 7 ঈশ্বর সূর্য়ের সঙ্গে কথা বলতে পারেন এবং সূর্য়োদয নাও হতে দিতে পারেন| তিনি তারাদের বন্দী করে ফেলতে পারেন যাতে তারারা আর না জ্বলে| 8 ঈশ্বর নিজেই আকাশ সৃষ্টি করেছেন| তিনি সমুদ্রের ঢেউযের ওপর দিয়ে হেঁটে যান| 9 “ঈশ্বরই বৃহত্ ভাল্লুকমণ্ডলী, সপ্তর্ষিমণ্ডল, কালপুরুষ এবং কৃত্তিকা সৃষ্টি করেছেন| তিনিই গ্রহরাজি সৃষ্টি করেছেন যা দক্ষিণের আকাশ পরিক্রমা করে| 10 ঈশ্বর মহান সব কাজ করেন যা মানুষ বুঝে উঠতে পারে না| ঈশ্বর য়ে সব আশ্চর্য় কাজ করেন তা অগণ্য| 11 দেখ, ঈশ্বর আমার পাশ দিয়ে চলে যান কিন্তু আমি তাঁকে দেখতে পাই না| তিনি পাশ দিয়ে চলে যান কিন্তু আমি তা উপলদ্ধি করতে পারি না| 12 যদি ঈশ্বর কিছু নিয়ে যান কেউই তাঁকে রোধ করতে পারে না| কেউই তাঁকে বলতে পারে না, ‘আপনি কি করছেন?’ 13 ঈশ্বর তাঁর রাগ দমন করবেন না| এমন কি রাহাবেরঅনুচররাও ঈশ্বরের সামনে নত হয়! 14 তাই আমি ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে পারি না| আমি জানি না তাঁকে কি বলতে হবে| 15 আমি নির্দোষ, কিন্তু আমি তাঁকে কোন উত্তর দিতে পারি না| আমি শুধু আমার বিচারকের কাছে প্রার্থনা করতে পারি| 16 আমি যদি ঈশ্বরকে ডাকি এবং তিনি যদি উত্তর দেন, তবু আমি বিশ্বাস করবো না য়ে উনি আমার কথা শুনবেন| 17 অকারণে তিনি আমার দেহে প্রচুর ক্ষত দেবেন| আমাকে আঘাত করার জন্য ঈশ্বর ঝড় পাঠাবেন| 18 ঈশ্বর পুনর্বার আমায় নিঃশ্বাস নিতে দেবেন না| তার বদলে তিনি আমায় ভয়ঙ্কর কষ্টে ভরিয়ে দেবেন| 19 এটা যদি শক্তির ব্যাপার হয়, নিশ্চয়ই তিনি অনেক বেশী শক্তিশালী| এটা যদি সুবিচারের ব্যাপার হয়, ঈশ্বরকে কে আদালতে আসার জন্য বাধ্য করতে পারে? 20 আমি নিরপরাধ, কিন্তু আমার নিজের কথাই আমাকে অপরাধী করে তোলে| আমি নির্দোষ, কিন্তু তিনি আমায় তাঁর বিচারে অপরাধী করবেন| তাঁর বিচারে আমি অপরাধী হব| 21 আমি নির্দোষ| কিন্তু আমি জানি না কি ভাবতে হবে| আমি আমার নিজের জীবনকে ঘৃণা করি| 22 আমি নিজেকে বলি, ‘একই ঘটনা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে| নির্দোষ লোক অপরাধীর মতোই মারা যায়| ঈশ্বর তাদের সবার জীবন শেষ করে দেন|’ 23 যখন ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটে এবং একজন নির্দোষ লোক মারা যায়, ঈশ্বর কি তার প্রতি বিদ্রূপের হাসি হাসেন? 24 যখন একজন দুষ্ট লোক রাজ্য শাসন করে, তখন কি ঘটছে, তা দেখা থেকে ঈশ্বর কি নেতাদের বিরত রাখেন? যদি তাই সত্য হয়, তাহলে ঈশ্বর কে? 25 “আমার দিন এক জন দৌড়বাজের থেকেও দ্রুত চলে যাচ্ছে| আমার দিনগুলি উড়ে চলে যাচ্ছে এবং তাদের মধ্যে কোন আনন্দ নেই| 26 আমার দিনগুলি নৌকার মত দ্রুত চলে যাচ্ছে ঠিক য়েমন ঈগল দ্রুত গতিতে শিকারের ওপর ছোঁ মারে| 27 “যদি আমি বলি, ‘আমি অভিয়োগ করবো না আমি আমার যন্ত্রণা ভুলে যাবো| আমি আমার মুখে হাসি ফোটাতে পারবো|’ 28 প্রকৃতপক্ষে এটা কোন কিছুকেই পরিবর্তিত করবে না| যন্ত্রণা এখনও আমাকে ভীত করে! 29 আমি ইতিপূর্বেই অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছি| তাই কেন আমি অকারণে চেষ্টা করবো? আমি বলি, ‘ভুলে যাও!’ 30 যদি আমি নিজেকে তুষার দিয়ে ধুয়ে ফেলি এবং সাবান দিয়ে আমার হাত পরিষ্কার করি, 31 তবুও ঈশ্বর আমাকে কবরে শাস্তি দেবেন এবং তোমরা আমাকে আবর্জনার মধ্যে ফেলে দেবে| তখন আমার বস্ত্রও আমায় ঘৃণা করবে| 32 ঈশ্বর তো আমার মতো এক জন মানুষ নন| সেই জন্য আমি তাঁকে উত্তর দিতে পারি না| আমরা আদালতে মিলিত হতে পারি না| 33 আমি মনে করি দুপক্ষের কথা শোনার জন্য এক জন মধ্যপক্ষ মানুষের দরকার| আমি মনে করি, আমাদের উভয়েরই বিচার করার জন্য যদি কেউ এক জন থাকতো! 34 আমি মনে করি, ঈশ্বরের শাস্তিদানের দণ্ড কেড়ে নেওয়ার জন্য যদি কেউ থাকতো! তাহলে ঈশ্বর আমায় আর ভয় দেখাতে পারতেন না| 35 তাহলে, ঈশ্বরকে ভয় না করে, আমি যা বলতে চাই, তা বলতে পারতাম| কিন্তু এখন আমি তা করতে পারি না|
1 আমি আমার নিজের জীবনকে ঘৃণা করি| আমি নিঃসঙ্কোচে অভিয়োগ করবো| আমার আত্মা বীতশ্রদ্ধ হয়ে আছে তাই এখন আমি একথা বলবো| 2 আমি ঈশ্বরকে বলবো: ‘আমায় দোষ দেবেন না! আমায় বলুন, আমি কি ভুল করেছি? আমার বিরুদ্ধে আপনার কি কোন অভিয়োগ আছে? 3 ঈশ্বর, আমাকে আঘাত করে আপনি কি সুখী হন? মনে হচ্ছে, আপনি যা সৃষ্টি করেছেন তার প্রতি আমার কোন ভ্রূক্ষেপই নেই| কিংবা, মন্দ লোকরা য়ে ফন্দি আঁটে সেই ফন্দিতে আপনিও কি আনন্দিত হন? 4 ঈশ্বর, আপনার কি মানুষের চোখ আছে? মানুষ য়ে ভাবে দেখে আপনিও কি সেই ভাবে দেখেন? 5 আপনার জীবন কি আমাদের মতই ক্ষুদ্র? আপনার জীবন কি মানুষের জীবনের মতই ছোট? না| তাহলে আপনি কি করে বুঝবেন এটা কেমন? 6 আপনি আমার দোষ দেখেন এবং আমার পাপ অন্বেষণ করেন| 7 আপনি জানেন আমি নির্দোষ কিন্তু কেউই আমাকে আপনার ক্ষমতা থেকে বাঁচাতে পারবে না! 8 ঈশ্বর, আপনার হাতই আমায় তৈরী করেছে এবং আমার দেহকে রূপদান করেছে| কিন্তু এখন আপনি চারদিক থেকে ঘিরে আমায় গিলে ফেলতে বসেছেন| 9 ঈশ্বর, স্মরণ করুন, আপনি আমাকে কাদা দিয়ে বানিয়ে ছিলেন| আপনি কি আবার আমাকে ধূলিতে পরিণত করবেন? 10 আপনি আমাকে দুধের মত ঢেলে দিয়েছিলেন এবং আমাকে, ঘন করে ছানার মত আকার দিয়েছেন| 11 আপনি আমার হাড় ও পেশী একত্রিত করেছেন| তারপর আপনিই চামড়া ও মাংস দিয়ে তা আবৃত করেছেন| 12 আপনিই আমাকে জীবন দিয়েছেন এবং আমার প্রতি সদয ছিলেন| আপনি আমার যত্ন নিয়েছেন এবং আমার আত্মার প্রতি যত্ন নিয়েছেন| 13 কিন্তু, এ সবই আপনি মনে মনে করেছেন, আমি জানি, এই সব পরিকল্পনাই আপনি গোপনে করেছেন| হ্যাঁ, আমি জানি, আপনার মনে এই ছিলো| 14 যদি আমি পাপ করি, আপনি তা লক্ষ্য করবেন এবং ভুল করার জন্য আপনি আমায় শাস্তি দেবেন| 15 যদি আমি পাপ করি, আমি য়েন দুঃখ পাই! কিন্তু যদিও আমি নির্দোষ তবু আমি আমার মাথা তুলতে পারি না| আমি এতই লজ্জিত ও আহত| 16 যদি আমার কোন সফলতা থাকতো ও আমি গর্ব করতে পারতাম তাহলে য়েমন করে এক জন শিকারী সিংহ শিকার করে, তেমনি করে আপনি আমায় শিকার করতেন| আমার বিরুদ্ধে আবার আপনি আপনার ক্ষমতা প্রদর্শন করতেন| 17 আমি য়ে ভুল করেছি, এটা প্রমাণের জন্য আপনি নতুন সাক্ষী নিয়ে আসেন| বার বার নানা ভাবে আপনি আমার প্রতি রাগ প্রদর্শন করবেন, আমার বিরুদ্ধে একের পর এক সৈন্যদল পাঠাবেন| 18 তাই, ঈশ্বর, কেন আমায় জন্মাতে দিয়েছিলেন? কেউ আমাকে দেখার আগেই আমি কেন মরলাম না! 19 তাহলে আমাকে কখনো বাঁচতে হত না| মাতৃগর্ভ থেকে আমাকে সরাসরি কবরে নিয়ে যাওয়া হত| 20 আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে গেছে| তাই আমায় একা থাকতে দিন| আমার য়েটুকু অল্প সময় বাকী আছে, তা উপভোগ করতে দিন| 21 য়েখান থেকে আমি আর ফিরব না সেই অন্ধকার ও মৃত্যুর জগতে প্রবেশ করার আগে আমার অল্প সময় আমাকে উপভোগ করতে দিন| 22 য়ে স্থানে গেলে কেউ দেখতে পায় না সেই অন্ধকার, ছায়াচ্ছন্ন ও বিশৃঙ্খলার জগতে যাওয়ার আগে, আমার য়েটুকু অল্প সময় বাকী রযেছে তা আমায় উপভোগ করতে দিন| এমনকি সেই স্থানের আলোও অন্ধকারের মত তমসাময|”‘
1 তখন নামাথীয সোফর ইয়োবকে উত্তর দিলেন এবং বললেন: 2 “এই কথার বন্যার উত্তর দেওয়া দরকার! এতো কথা কি ইয়োবকে সঠিক বলে প্রমাণ করে না! 3 ইয়োব, তুমি কি ভেবেছ তোমার জন্য আমাদের কাছে কোন উত্তর নেই? তুমি কি ভেবেছো যখন তুমি ঈশ্বরকে বিদ্রূপ করবে, তখন কেউ তোমাকে সাবধান করবে না? 4 ইয়োব, তুমি ঈশ্বরকে বলেছো, ‘আমার যুক্তিগুলি সত্য এবং আপনি দেখে নিন আমি শুচিশুদ্ধ|’ 5 ইয়োব, আহা যদি ঈশ্বর তোমায় উত্তর দিতেন! আশা করি তিনি তোমার সঙ্গে কথা বলবেন| 6 ঈশ্বর তোমাকে প্রজ্ঞার গূঢ় তত্ত্ব বলতে পারতেন| প্রকৃত প্রজ্ঞার দুটি দিক থাকে| অনুভব করো ঈশ্বর তোমার কিছু পাপ ভুলে গেছেন| তোমাকে তাঁর যতটা শাস্তি দেওয়া উচিত্ ছিল ততটা তিনি অবশ্যই তোমাকে দিচ্ছেন না| 7 “ইয়োব, তুমি কি মনে কর য়ে তুমি প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরকে বুঝেছ? তুমি কি মনে কর তুমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সীমা আবিষ্কার করে ফেলেছ? 8 স্বর্গে যা কিছু আছে সে বিষয়ে তুমি কিছুই করতে পারো না| মৃত্যুর স্থান সম্পর্কেও তুমি কিছুই জানো না| 9 ঈশ্বর পৃথিবীর থেকে বৃহত্ এবং সমুদ্রের থেকেও বড়| 10 “যদি ঈশ্বর তোমায় আটক করেন এবং তোমায় আদালতে নিয়ে যান, কেউই তাঁকে ঠেকাতে পারবে না| 11 প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরই জানেন য়ে কে অপদার্থ| যখন ঈশ্বর কোন মন্দ কাজ দেখেন তিনি তা মনে রাখেন| 12 একটা বুনো গাধা কখনও একটা মানুষের জন্ম দিতে পারে না| এবং একজন নির্বোধ লোক কখনও জ্ঞানী ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারে না| 13 “কিন্তু ইয়োব, তুমি তোমার হৃদয়কে ঈশ্বরমুখী করো এবং তাঁর কাছে প্রার্থনা রত তোমার হাত দুটি তুলে ধরো| 14 তোমার পাপকে তোমার কাছ থেকে অনেক দূরে রাখ| তোমার তাঁবুতে কোন মন্দ লোককে বাস করতে দিও না| 15 তাহলে তুমি লজ্জা না পেয়ে মুখ তুলতে পারবে| ভীত না হয়ে তুমি শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পারবে| 16 তাহলে তুমি তোমার দুর্ভোগ ভুলতে পারবে| তুমি তোমার সমস্যাগুলিকে বয়ে যাওয়া জলের চেয়ে বেশী মনে রাখবে না| 17 তাহলে তোমার জীবন দুপুরের সূর্য় প্রভার থেকেও অধিকতর উজ্জ্বল হয়ে উঠবে| জীবনের অন্ধকারতম সময়গুলো সকালের সূর্য়ের মত জ্বলজ্বল করবে| 18 তখন তুমি নিজেকে নিরাপদ মনে করবে| কারণ তখন আশা থাকবে| ঈশ্বর তোমার প্রতি যত্ন নেবেন এবং তিনি তোমায় বিশ্রাম দেবেন| 19 তুমি শুয়ে পড়তে পারবে এবং কেউ তোমাকে ভয় দেখাবে না| এবং অনেক লোক সাহায্যের জন্য তোমার কাছে আসবে| 20 দুষ্ট লোকরা সাহায্যের প্রত্যাশা করতে পারে কিন্তু তারা তাদের সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে না| তাদের আশার একমাত্র পরিণাম হবে মৃত্যু|”
1 তখন ইয়োব তাদের উত্তর দিলেন: 2 “আমি নিশ্চিত য়ে তুমি ভেবেছো, তুমিই এক মাত্র জ্ঞানী লোক| তুমি ভেবেছো যখন তুমি মারা যাবে তখন প্রজ্ঞা তোমার সঙ্গে চলে যাবে| 3 কিন্তু তোমারই মতো আমারও একটি মন আছে| আমি তোমার চেয়ে নিকৃষ্ট নই| সকলে ইতিমধ্যেই জানে তুমি কি বলছিলে| 4 “এই মাত্র আমার বন্ধুরা আমায় উপহাস করলো| তারা বলল, ‘সে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিল এবং সে তার উত্তর পেয়ে গেছে| এই কারণেই তার ক্ষেত্রে এমন সব মন্দ ঘটনা ঘটলো|’ “আমি এক জন সত্ লোক| আমি নির্দোষ| কিন্তু তবুও তারা আমার প্রতি উপহাস করে| 5 যাদের কোন সমস্যা নেই, সেই সব লোক যাদের সমস্যা থাকে তাদের উপহাস করে| এই সব লোকরা নিমজ্জমান লোককে আঘাত করে| 6 কিন্তু ছিনতাইবাজদের তাঁবু নির্বিক্থোকে| যারা ঈশ্বরকে উত্যক্ত করে তারা শান্তিতেই থাকে| তাদের নিজস্ব শক্তিই তাদের এক মাত্র ঈশ্বর| 7 “কিন্তু পশুদের জিজ্ঞাসা কর, তারা তোমায় শিক্ষা দেবে| কিংবা, আকাশের পাখীদের জিজ্ঞাসা কর, তারা তোমায় বলে দেবে| 8 অথবা পৃথিবীর সঙ্গে কথা বল সে তোমায় শিক্ষা দেবে| কিংবা সমুদ্রের মাছদের, তোমার সঙ্গে কথা বলতে দাও| 9 এই সব প্রাণীর প্রত্যেকেই জানে য়ে ঈশ্বর তাদের সৃষ্টি করেছেন| 10 প্রত্যেকটি প্রাণী যারা বেঁচে রযেছে, প্রত্যেকটি মানুষ যারা নিঃশ্বাস নিচ্ছে তারা ঈশ্বরের শক্তির অধীনে রযেছে| 11 জিভ কি খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ করে না? কান কি তার শোনা শব্দের অর্থ গ্রহণ করে না? 12 কিছু লোক বলে, ‘বয়স্ক লোকদের মধ্যে প্রজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায়| দীর্ঘ আযু জীবন সম্পর্কে বোধ আনে|’ 13 কিন্তু প্রজ্ঞা এবং ক্ষমতা ঈশ্বরেরই আছে| সদুপদেশ ও বোধ দুইই তাঁর| 14 ঈশ্বর যদি কোন কিছুকে ভেঙে দেন, লোকে তা আর গড়তে পারে না| যদি ঈশ্বর কোন লোককে হাজতে রাখেন কোন লোকই তাকে কারামুক্ত করতে পারে না| 15 ঈশ্বর যদি বৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রণ করেন তাহলে এই পৃথিবী শুকিয়ে যাবে| ঈশ্বর যদি বৃষ্টিকে অঝোরে ঝরতে দেন পৃথিবীতে বন্যা বয়ে যাবে| 16 ঈশ্বর শক্তিশালী এবং তাঁর গভীর প্রজ্ঞা আছে| য়ে প্রতারিত হয় সে এবং প্রতারক দুজনেই ঈশ্বরের| 17 ঈশ্বর তাঁর সার্বভৌমত্ব প্রদর্শনের জন্য জ্ঞানী ও দক্ষ ব্যক্তিদের বোকা প্রতিপন্ন করেন| 18 এক জন রাজা হয়তো লোকেদের জেলে বন্দী করতে পারে| কিন্তু ঈশ্বর তাদের কারামুক্ত করেন এবং তাদের শক্তিশালী করেন| 19 ঈশ্বর যাজকদের পদচ্যুত করেন এবং যারা মনে করে তারা যথায়থ ভাবে শিকড় গেড়েছে তাদের উলেট ফেলে দেন| 20 ঈশ্বর নির্ভর যোগ্য পরামর্শদাতাকেও নীরব করিযে দেন| বয়স্ক মানুষের প্রজ্ঞাও তিনি হরণ করেন| 21 ঈশ্বর নেতাদের গুরুত্ব হ্রাস করান| তিনি শাসকের ক্ষমতা কেড়ে নেন| 22 ঈশ্বর গোপনতম গোপন কথাটি প্রকাশ করেন| অন্ধকার এবং মৃত্যুময স্থানেও তিনি আলো পাঠান| 23 ঈশ্বর জাতিদের বৃহত্ এবং শক্তিশালী করেন, এবং তিনিই ঐ জাতিদের ধ্বংস করেন| তিনি একটি জাতিকে বিরাট বড় হতে দেন এবং তিনিই জাতির লোকদের ছড়িয়ে দেন| 24 ঈশ্বরই নেতাদের বোকা বানান| তিনি তাদের উ?শ্যবিহীন ভাবে মরুভূমিতে পরিভ্রমণ করান| 25 সে সব নেতাদের অবস্থা হয় অন্ধকারে পথ হাতড়ে বেড়ানো লোকদের মত| ঈশ্বর ওদের সেই নেশাগ্রস্ত লোকের মত করে তোলেন য়ে জানে না সে কোথায় যাচ্ছে|”
1 ইয়োব বললেন, “আগেও আমি এসব দেখেছি| তুমি যা বলছো, আমি তার সবই আগে শুনেছি| আমি ঐ সব কিছুই বুঝেছি| 2 তুমি যা জানো আমিও তাই জানি| আমিও তোমার মতই জানি| 3 কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে তর্ক করতে চাই না| আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলতে চাই| আমি আমার সমস্যার বিষয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে চাই| 4 কিন্তু তোমরা তিন জন মিথ্যা দিয়ে তোমাদের অজ্ঞতাকে ঢাকতে চাইছো| তোমরা সেই অপদার্থ ডাক্তারের মত যারা কারো রোগই সারাতে পারে না| 5 তোমরা যদি একটু চুপ করে থাকতে পারতে! সেটাই হত বিজ্ঞের মতো কাজ যা তোমরা করতে পারতে| 6 “এখন আমার যুক্তিগুলো শোন| আমার যা বলার আছে তা শোন| 7 তোমরা কি ঈশ্বরের জন্য মিথ্যা কথা বলবে? তোমরা কি ঈশ্বরের জন্য কপট ভাবে কথা বলবে? 8 তোমরা কি ঈশ্বরের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাবে? তোমরা কি তাঁর পক্ষ নিয়ে অন্যায় ভাবে তর্ক করবে? 9 যদি ঈশ্বর পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তোমাদের বিচার করেন তিনি কি তোমাদেরও সঠিক দেখবেন? তোমরা কি মনে কর, য়ে ভাবে তোমরা মানুষকে বোকা বানাও, সেই ভাবে তোমরা ঈশ্বরকে বোকা বানাতে পারবে? 10 তোমরা তো জানো, য়ে তোমরা যদি গোপনে পক্ষপাতিত্ব দেখাও, ঈশ্বর তোমাদের তিরস্কার করবেন| 11 ঈশ্বরের মহিমা তোমাদের ভীত করে| তোমরা তাঁকে ভয় পাও| 12 তোমাদের পরমপরাগত জ্ঞান ছাইযের মতই অকেজো| তোমাদের উত্তরগুলিও কাদামাটির মতো নিরর্থক| 13 “চুপ করে থাক এবং আমাকে কথা বলতে দাও! তাহলে আমার প্রতি যা কিছুই হোক আমি তা গ্রহণ করব| 14 আমি নিজেকে বিপদের মধ্যে নিয়ে যাবো এবং নিজের জীবন নিজের হাতেই তুলে নেব| 15 ঈশ্বর যদি আমাকে মেরেও ফেলেন আমি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে যাবো| কিন্তু আমি ঈশ্বরের সামনে প্রমাণ করে দেবো য়ে আমার পথও প্রকৃত ন্যায্য পথ ছিল| 16 নিশ্চিত ভাবে, এটা হবে আমার জয়| কোন দুষ্ট লোকই ঈশ্বরের মুখোমুখি হতে চায় না| 17 আমি যা বলছি তা মন দিয়ে শোন| আমাকে বুঝিযে বলতে দাও| 18 এখন আমি আমার যুক্তিগুলো উপস্থাপিত করতে প্রস্তুত| আমি খুব সতর্ক ভাবে আমার যুক্তি উত্থাপন করবো| আমি জানি আমিই সঠিক বলে চিহ্নিত হবো| 19 যদি কেউ প্রমাণ করে দেয় য়ে আমি ঠিক নই, আমি চুপ করে থাকব এবং মরে যাব| 20 “ঈশ্বর, আমাকে মাত্র দুটি জিনিস দিন, তাহলে আমি আপনার কাছ থেকে লুকাবো না| 21 আমার শাস্তি রদ করে দিন এবং আপনার ভয়ঙ্কর রূপ দিয়ে আমায় সন্ত্রস্ত করা বন্ধ করে দিন| 22 তারপর আপনি আমায় ডাকবেন, আমি আপনাকে উত্তর দেবো| অথবা আমায় বলতে দিন এবং আপনি উত্তর দিন| 23 আমি কতগুলি পাপ করেছি? আমি কি ভুল করেছি? আমাকে আমার পাপ ও অন্যায়গুলি দেখিয়ে দিন| 24 ঈশ্বর, কেন আপনি আমায় এড়িয়ে যাচ্ছেন এবং আমাকে আপনার শএু বলে বিবেচনা করছেন? 25 আপনি কি আমায় ভয় দেখাতে চাইছেন? আমি বাতাসে ওড়া একটা শুকনো পাতা মাত্র| আপনি একটা ক্ষুদ্র খড়-কুটোকে আক্রমণ করছেন! 26 ঈশ্বর, আমার সম্পর্কে আপনি মন্দ কথা বলেন| যখন আমি অল্প বয়স্ক ছিলাম তখনকার পাপের জন্য আপনি আমায় শাস্তি দিচ্ছেন| 27 আপনি আমার পায়ে শিকল পরিযেছেন| আমার প্রতিটি পদক্ষেপ আপনি লক্ষ্য করেন| আমার সকল গতিবিধিই আপনি নজর করেন| 28 তাই, পচনশীল কাঠের মত, পোকা খাওয়া কাপড়ের মত আমি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে যাচ্ছি|”
1 ইয়োব বললেন, “আমরা প্রত্যেকেই মানুষ| আমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং সমস্যায় পূর্ণ| 2 মানুষের জীবন ফুলের মত| সে তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং তারপর মারা যায়| মানুষের জীবন একটা ছায়ার মত যা অল্পক্ষণের জন্য এখানে থাকে এবং তারপর আবার চলে যায়| 3 কিন্তু যদিও আমি নেহাতই একটি মানুষ মাত্র, আপনি আমার ওপর মনোয়োগ দেন এবং আমাকে আদালতে নিয়ে যান| 4 “কিন্তু অশুচি কিছু থেকে কেই বা শুচি কিছু তৈরী করতে পারে? কেউই নয়! 5 মানুষের জীবন সীমিত| ঈশ্বর, আপনিই স্থির করেছেন মানুষ কতদিন বাঁচবে| আপনিই মানুষের জন্য সেই সীমা নির্ধারণ করেন এবং কোন কিছুই আর তাকে পরিবর্তন করতে পারে না| 6 তাই ঈশ্বর, আমাদের প্রতি লক্ষ্য রাখা বন্ধ করুন| আমাদের একা ছেড়ে দিন| আমাদের সময় শেষ হওয়া পর্য়ন্ত আমাদের কঠিন জীবন আমাদের উপভোগ করতে দিন| 7 “এমনকি একটা গাছেরও আশা আছে| যদি না তাকে কেটে ফেলা হয় তা আবার বড় হতে পারে| তা আবার নতুন অঙ্কুর ছড়িয়ে দিতে পারে| 8 এর শিকড় মাটির নীচে বুড়ো হয়ে য়েতে পারে, এর কাণ্ড ধূলায মরে য়েতে পারে, 9 কিন্তু যদি সামান্য একটুও জল পায় আবার তা বাড়তে শুরু করে| নতুন গাছের মতই তা আবার বড় হতে থাকে| 10 কিন্তু যখন এক জন শক্তসমর্থ মানুষ মরে, সে শেষ হয়ে যায়| যখন মানুষ মরে যায়, সে চলে যায় ঠিক 11 দীঘি য়েমন শুকিয়ে যায় অথবা নদী য়েমন শুকিয়ে যায় তার মতন| 12 যখন এক জন মানুষ মরে যায়, সে শুয়ে পড়ে এবং সে আর ওঠে না| এক জন মৃত লোক উঠে দাঁড়াবার আগে এই আকাশমণ্ডল অদৃশ্য হয়ে যাবে| না| সেই নিদ্রা থেকে মানুষ আর জাগবে না| 13 আমার ইচ্ছা আপনি আমাকে আমার কবরে লুকিয়ে রাখুন| আমার ইচ্ছা, আপনার ক্রোধ প্রশমিত না হওয়া পর্য়ন্ত আপনি আমায় সেই খানে লুকিয়ে রাখুন| তারপর না হয় আমাকে স্মরণ করার জন্য আপনি একটা সময় বের করবেন| 14 যদি কোন লোক মারা যায়, সে কি আবার বাঁচবে? যদি তাই সম্ভব হয় আমি আমার মুক্তি পর্য়ন্ত অপেক্ষা করবো| 15 ঈশ্বর, আপনি আমায় ডাকবেন এবং আমি আপনার ডাকে সাড়া দেবো| তাহলে আমি, যাকে আপনি তৈরী করেছেন, সেই আমি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠব| 16 আমার প্রত্যেকটি পদক্ষেপে আপনি আমায় লক্ষ্য করুন, কিন্তু আমার পাপ মনে রাখবেন না| 17 আমার সমস্ত পাপ আপনি একটা থলেতে ভরে, তার মুখ বন্ধ করে, তাকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন| 18 “পর্বতও ভেঙে যায় এবং ধূলায পরিণত হয়; বড় পাথরও আলগা হয়ে ভেঙে পড়ে| 19 তাদের ওপর দিয়ে জলরাশি প্রবাহিত হয়ে তাদের ধুয়ে নিয়ে যায়| বন্যা ভূমির মাটিকে ধুয়ে নিয়ে যায়| সেই ভাবেই হে ঈশ্বর, আপনি এক জন মানুষের আশা এবং ইচ্ছা ধ্বংস করেন| 20 আপনি তাকে সম্পূর্ণ পরাজিত করেন এবং সে চলে যায়| আপনি তাকে দুঃখী করেন এবং চির দিনের জন্য তাকে মৃত্যুলোকে পাঠিয়ে দেন| 21 তার ছেলেরা হয়ত সম্মান পেতে পারে, অথবা তারা হয়ত গুরুত্বপূর্ণ না হতে পারে, কিন্তু সে কখনও জানতে পারবে না| 22 সেই লোকটি তার শরীরে কেবল যন্ত্রণা ভোগ করে এবং সে উচ্চস্বরে কেবল নিজের জন্যই কাঁদে|”
1 তখন তেমনের ইলীফস ইয়োবকে উত্তর দিলেন: 2 “ইয়োব, যদি তুমি সত্যই জ্ঞানী হতে তুমি তোমার অর্থহীন ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে উত্তর দিতে না! এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি পূর্বের গরম বাতাসে নিজেকে পূর্ণ করে না| 3 তুমি কি মনে কর একজন জ্ঞানী মানুষ অর্থহীন কথা দিয়ে তর্ক করবে এবং এমন কথা বলবে যাতে কোন লাভ নেই? 4 ইয়োব, যদি তোমার নিজেরই পথ থাকতো তাহলে কেউ আর ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে তাঁর কাছে প্রার্থনা করতো না| 5 য়ে সব বিষয় তুমি বলেছো তাতে তোমার পাপ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে| ইয়োব, বাক্চাতুরীর সাহায্যে তুমি তোমার পাপকে ঢাকতে চাইছো| 6 তুমি য়ে ভুল করেছো, এ কথা আমার প্রমাণ করার দরকার নেই| কেন? নিজের মুখে তুমি যা যা বললে তাই প্রমাণ করে য়ে তুমি ভুল করেছো| তোমার নিজের ওষ্ঠ দ্বয তোমার বিরুদ্ধে বলছে| 7 “ইয়োব, তুমি কি মনে কর য়ে তুমিই প্রথম জন্মেছো? তুমি কি এই পাহাড়গুলির জন্মের আগে জন্মেছ? 8 তুমি কি ঈশ্বরের গোপন পরিকল্পনা শুনেছিলে? তুমি কি নিজেকেই এক মাত্র জ্ঞানী ভাবো? 9 ইয়োব, তুমি যা জান আমরা ঠিক ততটাই জানি! তুমি যতটা বোঝ আমরাও ঠিক ততটাই বুঝি| 10 যাদের মাথায় পাকা চুল তারা এবং বয়স্ক লোকে আমাদের সঙ্গে একমত হয়| হ্যাঁ, এমন কি তোমার পিতার চেয়েও যারা বয়স্ক তারাও আমাদেরই পক্ষে| 11 ঈশ্বর তোমাকে স্বস্তি দিতে চেষ্টা করেন এবং আমরা খুব শান্ত ভাবে তোমার সঙ্গে কথা বলি| কিন্তু তোমার পক্ষে তা য়থেষ্ট নয়| 12 ইয়োব, তুমি কেন এত আবেগপ্রবণ? কেন তোমার চোখ লাল হয়ে যায়? 13 যখন তুমি এই সব ক্রোধর কথা বল তখন তুমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চলে যাও| 14 “এক জন মানুষ প্রকৃতই শুদ্ধ হতে পারে না| এক জন মানুষ কখনও ঈশ্বরের চেয়ে বেশী সঠিক হতে পারে না! 15 ঈশ্বর তাঁর বার্তাবাহকদেরওবিশ্বাস করেন না| এমনকি ঈশ্বরের তুলনায় স্বর্গও শুদ্ধ নয়| 16 মানুষও অপদার্থ| মানুষ নোংরা এবং নষ্ট| সে জলের মতই পাপ গলাধঃকরণ করে| 17 “আমার কথা শোন ইয়োব, আমি তোমাকে তা বুঝিযে বলবো| আমি যা জানি, তোমায় তা বলবো| 18 জ্ঞানী লোকরা আমাকে যা বলেছেন সেই সব কথা আমি তোমায় বলবো| জ্ঞানী লোকের পূর্বপুরুষরা এই কথাগুলো তাদের বলে গিয়েছিলেন| তাঁরা আমার কাছে কোন গোপন কথা লুকিয়ে রাখেননি| 19 তাঁরা একাই তাদের দেশে বাস করেছেন| সেখান থেকে কোন বিদেশীই যায় নি| তাই কোন লোকই তাদের কোন অদ্ভ্ুত আদর্শের কথা বলে নি| 20 এই সব জ্ঞানী লোক বলেছেন, এক জন দুষ্ট লোক সারা জীবন কষ্ট পায়| এক জন নিষ্ঠুর লোক জীবনের সারা বছর কষ্ট পায়| 21 প্রত্যেকটি শব্দ তাকে ভীত করে| সে যখন মনে করে য়ে সে নিরাপদে আছে, তখন শএু তাকে আক্রমণ করবে| 22 এক জন দুষ্ট লোক প্রচণ্ড হতাশাগ্রস্ত এবং অন্ধকারকে এড়াবার তার কোন পথই নেই| কোন একটা জায়গায় একটা তরবারী আছে যা তাকে হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করছে| 23 সে এখানে ওখানে খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়ায়| সে জানে য়ে কঠিন সময় আসন্ন| 24 দুঃখ এবং যন্ত্রণা তাকে ভীত করে| এগুলো তাকে রাজার মতো আক্রমণ করে য়েন তাকে ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত| 25 কেন? কারণ দুষ্ট লোকরা ঈশ্বরের বাধ্য হতে চায় না- তারা ঈশ্বরকে ঘুষি দেখায়, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে পরাজিত করতে চায়| 26 দুষ্ট লোকরা ভীষণ একগুঁযে| তারা একটা মোটা শক্ত ঢাল নিয়ে ঈশ্বরকে আক্রমণ করে| 27 “এক জন লোক ধনী এবং মোটা হতে পারে, 28 কিন্তু সে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরে, যেখানে কেউ থাকে না অথবা য়ে সমস্ত বাড়ীগুলো ধ্বংস হবার জন্য ঠিক হয়েছে সেগুলোতে বাস করবে| 29 দুষ্ট লোকরা দীর্ঘদিন ধরে ধনী থাকবে না| তার সম্পদ স্থায়ী হবে না| তার ফসল বাড়বে না| 30 দুষ্ট লোক অন্ধকারকে এড়াতে পারবে না| সে সেই গাছের মতো হবে যার পাতা রোগে শুকিয়ে যায় এবং বাতাস তাদের সবাইকে উড়িযে নিয়ে যায়| 31 দুষ্ট লোকরা অর্থহীন বিষয়ের ওপর কখনো নির্ভর করে না যা তাদের বিপথে নিয়ে যাবে| কেন? কারণ তারা কিছুই পাবে না| 32 দুষ্ট লোকে তাদের পূর্ণ ব্যাপ্তির জীবনযাপন করতে পারবে না| তারা হবে একটি গাছের মত যার ডালপালা শুকিয়ে ঝরে গেছে এবং মরে গেছে| 33 দুষ্ট লোকে সেই দ্রাক্ষা গাছের মতো হবে যার দ্রাক্ষা ফল পাবার আগেই শুকিয়ে পড়ে যায়| ঐ লোকটি সেই জলপাই গাছের মতো হবে যার মুকুল ঝরে যায়| 34 কেন? কারণ এক দল ঈশ্বরবিহীন মানুষ ভাল ফল ফলাতে পারে না| যারা ঘুস নেয়, আগুন তাদের বাড়ী ধ্বংস করে দেয়| 35 মন্দ লোকরা সমস্যাকে ধারণ করে এবং মন্দকে জন্ম দেয়| তাদের গর্ভে জন্ম নেয় মিথ্যা|”
1 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন, 2 “আমি এই সব কথা আগেই শুনেছি| তোমরা তিন জন আমাকে কষ্টই দিলে, স্বস্তি নয়| 3 তোমাদের দীর্ঘ ভাষণ আর শেষ হয় না! কিসে তোমাদের এত বিচলিত করেছে য়ে তোমরা কথা বলেই চলেছ? 4 যদি তোমরা আমার সমস্যায় পড়তে, তোমরা য়ে কথাগুলি আমায় বললে, আমিও তোমাদের সেই কথাগুলি বলতে পারতাম| আমিও তোমাদের প্রতি জ্ঞানগর্ভ কথা বলতে পারতাম এবং তোমাদের প্রতি মাথা নাড়াতে পারতাম| 5 কিন্তু আমি তোমাদের উত্সাহ দিতাম এবং য়ে কথাগুলো বলছি, সেগুলো বলে তোমাদের আমি আশা দিতাম| 6 “কথা বললেও আমার যন্ত্রণা চলে যায় না, নীরব থাকলেও আমার ব্যথা আমাকে ছেড়ে যায় না| 7 কিন্তু, হে ঈশ্বর, আপনি আমার শক্তি কেড়ে নিয়েছেন| আপনি আমার সারা পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছেন| 8 আপনি আমায় শীর্ণ ও দুর্বল করে দিয়েছেন, এর অর্থ, লোকে মনে করে য়ে আমি অপরাধী| 9 “ক্রোধ ঈশ্বর আমাকে আক্রমণ করেছেন এবং আমার দেহকে ছিন্ন-ভিন্ন করেছেন| ঈশ্বর আমার বিরুদ্ধে তাঁর দাঁত গর্ষন করেছেন| আমার শএু ঘৃণাভরে আমার দিকে তাকায| 10 আমার চার দিকে লোক জন জড়ো হয়েছে| তারা আমাকে নিয়ে মজা করে এবং আমার গালে চড় মারে| 11 ঈশ্বর আমাকে মন্দ লোকদের হাতে তুলে দিয়েছেন| তিনি দুষ্ট লোকের হাতে আমাকে তুলে দিয়েছেন| 12 আমার সব কিছুই সুন্দর ছিলো কিন্তু ঈশ্বর আমায় ধ্বংস করেছেন! হ্যাঁ, তিনিই আমার ঘাড় ধরে আমায় খণ্ড-বিখণ্ড করেছেন| ঈশ্বর আমাকে লক্ষ্যভেদের বস্ুতে পরিণত করেছেন| 13 ঈশ্বরের তীরন্দাজ সৈন্যরা আমার চারদিকে ঘুরছে| তিনি আমার বৃক্কে তীর ছুঁড়ছেন| তিনি আমাকে কোন দযা দেখান না| তিনি আমার পিত্তকে মাটিতে ফেলে দেন| 14 বার বার ঈশ্বর আমায় আক্রমণ করেন| যুদ্ধের সৈন্যরা য়েমন তেড়ে আসে তেমন করে তিনি আমার দিকে ছুটে আসেন| 15 “আমি নিদারুণ ভাবে দুঃখী, তাই আমি এই দুঃখের বস্ত্র পরেছি| আমি এই ধূলো ও ছাইযের ওপর বসে অনুভব করি য়ে আমি পরাজিত| 16 কেঁদে কেঁদে আমার মুখ লাল হয়ে গেছে| আমার চোখে ঘন অন্ধকার নেমে এসেছে| 17 আমি কারো প্রতিই নৃশংস ছিলাম না| কিন্তু এই মন্দ ঘটনাগুলি আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে| আমার প্রার্থনা যথায়থ ও পবিত্র| 18 “আমার প্রতি য়ে অন্যায় ঘটেছে, হে পৃথিবী, তুমি তা গোপন কর না| ন্যাযের জন্য আমার আর্তিকে স্ত? হতে দিও না| 19 এখনও পর্য়ন্ত স্বর্গে কেউ আছে য়ে আমার পক্ষে কথা বলবে| এখনও পর্য়ন্ত ওপরে কেউ আছে য়ে আমার পক্ষে সাক্ষী দেবে| 20 আমার চোখ যখন ঈশ্বরের জন্য অশ্রু বিসর্জন করে, আমার বন্ধুরা আমার হয়ে কথা বলে| 21 এক জন য়ে ভাবে বন্ধুর জন্য তর্ক করে, সেই ভাবেই সে আমার জন্য ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলে| 22 “আর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই আমি সেখানে যাবো য়েখান থেকে ফেরা যায় না|
1 আমার হৃদয় ভগ্ন হয়েছে, আমি প্রাণ ত্যাগের জন্য প্রস্তুত| আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে| কবর আমার জন্য অপেক্ষা করছে| 2 লোকে আমার চারপাশে দাঁড়িয়ে আমার প্রতি বিদ্রূপের হাসি হাসছে| আমি দেখছি ওরা য়েন আমায় টিটকিরি করছে ও অপমান করছে| 3 “ঈশ্বর, আমাকে মুক্ত করার মূল্য দিন| আর কেউ আমায় সাহায্য করতে পারবে না| 4 আপনি আমার বন্ধুদের বোধশক্তি হরণ করেছেন তাই তারা কিছুই বুঝতে পারছে না| ওদের জয়ী হতে দেবেন না| 5 আপনি জানেন লোকে কি বলছে, ‘বন্ধুকে সাহায্য করার জন্য এক জন লোক তার নিজের সন্তানদের উপেক্ষা করছে|’ কিন্তু আমার বন্ধু আমার বিরুদ্ধে গেছে| 6 আমার নামকে ঈশ্বর প্রত্যেকের কাছে একটা মন্দ শব্দে পরিণত করেছেন| লোকে আমার মুখের ওপর থুতু দেয়| 7 আমার চোখ প্রায় অন্ধ হয়ে গেছে কারণ আমি প্রচণ্ড দুঃখ ও যন্ত্রণার মধ্যে আছি| আমার সারা দেহ প্রচণ্ড শীর্ণ হয়ে ছায়ার মতো হয়ে গেছে| 8 এর ফলে ভালো লোকরা যথার্থই বিহবল হয়ে পড়েছে| যারা ঈশ্বরকে মানে না তাদের বিরুদ্ধে, নির্দোষ লোকদের উত্তেজিত করা হচ্ছে| 9 কিন্তু ভাল লোকরা ভাল জীবনযাপন করবে| নিস্পাপ লোকরা আরও শক্তিশালী হবে| 10 “কিন্তু এগিয়ে এসো, তোমরা সবাই এসো এবং আমাকে বুঝিযে দাও য়ে সবই আমার দোষ| তোমাদের কেউই জ্ঞানী নও| 11 আমার জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে| আমার পরিকল্পনা ধ্বংস হয়ে গেছে; আমার আশা চলে গেছে| 12 কিন্তু আমার বন্ধুরা সব গুলিযে ফেলেছে| তারা ভাবে রাতটাই দিন| তারা ভাবে অন্ধকারই আলোকে দূর করে| 13 কবরকেই আমি আমার নতুন ঘর বলে হয়তো আশা করতে পারি| হয়তো অন্ধকার কবরে আমি আমার শয়্য়া পাতার আশা করব| 14 আমি কবরকে বলতে পারি, ‘তুমিই আমার পিতা,’এবং কৃমিকীটদের বলতে পারি, ‘আমার মা’ ও ‘আমার বোন|’ 15 কিন্তু তা যদি আমার একমাত্র আশা হয় তাহলে আমার আর কোন আশাই নেই| তাই যদি আমার এক মাত্র আশা হয় তাহলে লোকে আমার জন্য আর কোন আশাই দেখবে না| 16 আমার আশাও কি কবরে যাবে? আমরা কি এক সঙ্গে ধূলায মিশে যাবো?”
1 তখন শূহীয বিল্দদ উত্তর দিলেন: 2 “ইয়োব, কখন তুমি কথা বলা বন্ধ করবে? শান্ত হও এবং শোন| আমাদের কিছু বলতে দাও| 3 কেন তুমি আমাদের বোবা গরুর মতো নির্বোধ ভাবছো? 4 ইয়োব, তোমার ক্রোধ শুধু মাত্র তোমাকেই আহত করছে| লোকে কি শুধু তোমার জন্য পৃথিবী ত্যাগ করবে? তুমি কি মনে কর, য়ে শুধু তোমাকে খুশী করতে ঈশ্বর পর্বতকে সরাবেন? 5 “হ্যাঁ, মন্দ লোকের আলো চলে যাবে| তার আগুন দ3 করা বন্ধ করে দেবে| 6 তার ঘরের আলো অন্ধকারে পরিণত হবে| তার নিকটের আলোও নিভে যাবে| 7 তার পদক্ষেপগুলো আর দৃঢ় ও দ্রুত হবে না| কিন্তু সে আস্তে আস্তে দুর্বলের মত হাঁটবে| তার নিজের মন্দ বুদ্ধিই ওর পতন ঘটাবে| 8 তার নিজের পা-ই তাকে ফাঁদের দিকে নিয়ে যাবে| সে ফাঁদের ওপর দিয়েই হাঁটবে এবং ধরা পড়বে| 9 একটা ফাঁদ নিশ্চয়ই ওর পা ধরবেই| একটা ফাঁদ তাকে আঁকড়ে ধরবেই| 10 মাটির কোন একটা দড়ি তাকে ফাঁদে ফেলবেই| তার ফাঁদ রাস্তায় ওর জন্য অপেক্ষা করছে| 11 তার চার দিকেই ভয়ঙ্করতা প্রতীক্ষা করছে| প্রত্যেকটি পদক্ষেপেই ভয় ওকে অনুসরণ করবে| 12 মন্দ সমস্যাসমূহ ওর জন্য ক্ষুধার্তের মত অপেক্ষা করছে| ওর পতন হলেই ধ্বংস ও দুর্বিপাক ওর জন্য ওত্ পেতে আছে| 13 ভয়ঙ্কর অসুখ তার গায়ের চামড়া খেয়ে ফেলবে| ঐ অসুখ ওর হাত, পা পচিযে দেবে| 14 দুষ্ট লোককে তার ঘরের নিরাপত্তা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে| য়ে ভয়ঙ্করের রাজা তার সঙ্গে দেখা করার জন্য ওকে নিয়ে যাওয়া হবে| 15 তার ঘরে কিছুই পড়ে থাকবে না| কেন? জ্বলন্ত গন্ধক ওর বাড়ীর চারপাশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে| 16 ওর নিথস্থ শিকড় শুকিয়ে যাবে, ওর উর্ধস্থ ডালপালাও শুকিয়ে যাবে| 17 পৃথিবীর মানুষ ওকে স্মরণে রাখবে না| কোন লোকই আর ওর নাম উল্লেখ করবে না| 18 লোকে তাকে আলো থেকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেবে| তারা ওকে ওর জগত্ থেকে তাড়িয়ে দেবে| 19 ওর কোন পুত্র বা পৌত্র থাকবে না| ওর বাড়ীর কেউই বেঁচে থাকবে না| 20 তার প্রতি কি হয়েছিল দেখে পশ্চিমের লোকরা চমকে উঠবে| পূর্বের লোকরাও ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে যাবে| 21 দুষ্ট লোকদের বাড়িতে সেটা প্রকৃতই ঘটবে| যারা ঈশ্বর সম্পর্কে কোন কিছু গ্রাহ্য করে না তাদের ঠিক এই রকমই ঘটবে!”
1 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন: 2 “আর কতক্ষণ তোমরা আমায় আঘাত করবে এবং বাক্য বাণে আমায় জর্জরিত করবে? 3 এখন তোমরা আমাকে দশবার অপমান করেছো| আমায় আক্রমণের সময় তোমরা লজ্জার লেশমাত্র দেখাও নি! 4 এমনকি যদি আমি অপরাধ করে থাকি, তা আমার সমস্যা| 5 তোমরা শুধুমাত্র নিজেকে আমার চেয়ে ভালো বলে দেখাতে চাইছো| তোমরা বলছো য়ে আমার সমস্যাগুলি আমারই এুটির ফলশ্রুতি| 6 কিন্তু আমি চাই তোমরা জান য়ে ঈশ্বর আমার প্রতি ভুল করেছেন| আমাকে ধরার জন্য তিনি ফাঁদ পেতেছেন| 7 আমি চিত্কার করি, ‘ও আমায় আঘাত করেছে!’ কিন্তু আমি কোন উত্তর পাই না| এমনকি যদি আমি সাহায্যের জন্য উচ্চস্বরে ডাক দিই, সুবিচার হয় না| 8 ঈশ্বর আমার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন তাই আমি এগিয়ে য়েতে পারি না| তিনি আমার পথকে অন্ধকারে আচ্ছন্ন করে দিয়েছেন| 9 ঈশ্বর আমার সম্মান হরণ করে নিয়েছেন| আমার মাথা থেকে তিনি মুকুট কেড়ে নিয়েছেন| 10 আমি শেষ না হওয়া পর্য়ন্ত ঈশ্বর চারদিক থেকে আমার দেওয়ালে আঘাত করবেন| শিকড় সমেত উপড়ে দেওয়া গাছের মত তিনি আমার সব আশা উত্পাটিত করেছেন| 11 আমার বিরুদ্ধে ঈশ্বরের ক্রোধ জ্বলছে| তিনি আমাকে তাঁর শএু বলে অভিহিত করেন| 12 আমাকে আক্রমণ করার জন্য ঈশ্বর তাঁর সৈন্যদের পাঠিয়েছেন| আমার বিরুদ্ধে তারা আক্রমণের মঞ্চ গড়েছে| আমার তাঁবুর চারদিকে ওরা আস্তানা গেড়েছে| 13 “ঈশ্বর আমার আত্মীয়দের আমার থেকে দূরে পাঠিয়ে দিয়েছেন| এমনকি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা আমার প্রতি অচেনা লোকের মত ব্যবহার করে| 14 আমার আত্মীয়রা আমায় ছেড়ে চলে গেছে| বন্ধুরাও আমায় ভুলে গেছে| 15 আমার বাড়ীর দর্শনার্থী এবং দাসীরা এমন ভাবে আমার দিকে তাকায য়েন আমি আগন্তুক এবং বিদেশী| 16 আমি আমার ভৃত্যকে ডাকি কিন্তু সে সাড়া দেয় না| এখন আমাকে আমার ভৃত্যের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করতে হবে| 17 আমার স্ত্রী আমার শ্বাসের ঘ্রাণকে ঘৃণা করে| আমার নিজের ভাইরা আমাকে ঘৃণা করে| 18 এমনকি ছোট ছোট শিশুরা আমায় নিয়ে মজা করে| আমি যখন ওদের কাছে আসি ওরা আমায় বাজে কথা বলে| 19 আমার সব ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমায় ঘৃণা করে| এমনকি যাদের আমি ভালোবাসি তারাও আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে| 20 “আমি এতই শীর্ণ হয়েছি য়ে আমার হাড়ে আমার চামড়া ঝুলছে| খুবই সামান্য জীবন আমাতে অবশিষ্ট আছে| 21 “দযা কর, বন্ধুরা আমার, আমায় দযা কর! কেন? কারণ ঈশ্বর আমার বিরুদ্ধে রযেছেন| 22 য়েমন করে ঈশ্বর আমায় তাড়া করেছেন তোমরাও কেন তেমনি করছো? তোমরা কি আমায় য়থেষ্ট আক্রমণ করনি? 23 “আমার বড় ইচ্ছে করে য়ে আমার কথাগুলো লেখা থাকবে| আমার খুব ইচ্ছে করে সেগুলি গোটানো কাগজে লেখা থাকবে| 24 আমার কথাগুলি য়েন সীসা ও লৌহশলাকা দিয়ে পাথরে খোদাই করা থাকে যাতে কথাগুলো চিরদিন থাকে| 25 আমি জানি একজন আমার স্বপক্ষে আছে| আমি জানি সে বেঁচে আছে| এবং শেষ কালে সে এই মাটিতে দাঁড়াবে এবং আমায় প্রতিরক্ষা করবে| 26 আমি আমার দেহ ত্যাগ করে চলে যাবার পরে এবং আমার দেহের চামড়া নষ্ট হওয়ার পরেও আমি ঈশ্বরকে দেখবো, আমি তা জানি| 27 আমি নিজের চোখে ঈশ্বরকে দেখবো| অন্য কেউ নয়, আমি নিজে ঈশ্বরকে দেখবো, এবং তা আমাকে কতখানি অভিভূত করবে তা আমি বলতে পারবো না! আমার শক্তি সম্পূর্ণ ভাবে চলে গেছে| 28 “তোমরা হয়তো বলবে, ‘আমরা এবিষয়ে চিন্তা করবো এবং আমরা তাকে দোষ দেওয়ার কারণ খুঁজে বের করবো!’ 29 কিন্তু একটি তরবারীকে তোমাদের প্রত্যেকেরই নিজের থেকে ভয় পাওয়া উচিত্! কেন? কারণ তরবারিই তোমাদের ক্রোধর প্রাপ্য| তখন তোমরা বুঝবে, বিচারের সময় বলে কিছু আছে|”
1 তখন নামাথার সোফর উত্তর দিলো: 2 “ইয়োব, তুমি আমার চিন্তাকে তাড়িত করেছো, তাই আমার ভেতরের এই অনুভূতিগুলির জন্য আমি অবশ্যই তোমাকে উত্তর দেবো| আমি কি ভাবছি, তা আমি খুব তাড়াতাড়ি বলবো| 3 তোমার উত্তর দিয়ে তুমি আমাকে অপমানিত করেছো| কিন্তু আমি বুদ্ধিমান, আমি জানি কি করে তোমাকে উত্তর দিতে হয়| 4 “তুমি জানো য়ে এক জন বদ লোকের আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয় না| তুমি নিশ্চয়ই জান য়ে যখন থেকে আদমকে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল, তখন থেকেই এটা সত্য| য়ে লোক ঈশ্বরকে গ্রাহ্য করে না, সে খুব অল্প সময়ের জন্য সুখী হয় মাত্র| 5 6 এমনকি যদি বদ লোকের অহঙ্কার আকাশকে স্পর্শ করে এবং তার মাথা মেঘকে স্পর্শ করে 7 তবু তার মলের মতো সেও চির দিনের জন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে| য়ে লোকরা তাকে চিনতো তারা বলবে, ‘কোথায় সে?’ 8 সে স্বপ্নের মতোই উড়ে যাবে এবং কেউ তাকে আর খুঁজে পাবে না| একটা দুঃস্বপ্নের মতো তাকে জোর করে তাড়ানো হবে এবং লোকে তাকে ভুলে যাবে| 9 যারা তাকে দেখতো তারা তাকে আর দেখতে পাবে না| ওর পরিবার ওর দিকে আর তাকাবে না| 10 বদ লোকদের সন্তানরা দরিদ্র লোকদের কাছে সাহায্য চাইবে| মন্দ লোকটি অবশ্যই নিজের হাতে তার সম্পত্তি ফিরিযে দেবে| 11 যখন ও যুবক ছিল তখন হয়ত তার হাড়গুলো শক্ত, মজবুত এবং তারুণ্যে ভরা ছিল, কিন্তু ওর সঙ্গে ওরাও ধূলোয় শুয়ে থাকবে| 12 “মন্দ লোকদের মুখে খারাপটাই মিষ্টি লাগে| তাকে সে জিভের তলায় রাখে| 13 মন্দ লোক খারাপটাকেই উপভোগ করে| সুমিষ্ট মিছরীর মতই সে সেটাকে মুখে ধরে রাখে| 14 কিন্তু সেই মন্দটাই ওর পেটের ভেতর গিয়ে বিষ হয়ে উঠবে| এটা ওর শরীরের ভেতরে গিয়ে, সাপের বিষের মতোই বিষাক্ত হয়ে উঠবে| 15 মন্দ লোকরা সম্পত্তি গলাধঃকরণ করে| কিন্তু ওরা তা উগরে দেবে| ঈশ্বরই ওই লোকদের দিয়ে তা বমি করাবেন| 16 মন্দ লোকরা সাপের বিষ চুষে নেয়| সাপের বিষ দাঁতই ওদের হত্যা করবে| দুষ্ট লোকদের বিষাক্ত সাপ দংশন করবে এবং বিষ তাদের মেরে ফেলবে| 17 য়ে নদী দুধ এবং মধু সহ প্রবাহিত হয় মন্দ লোকরা তা দেখার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে| 18 মন্দ লোকরা তাদের লাভের অংশ ফিরিযে দিতে বাধ্য হবে| তারা যার জন্য পরিশ্রম করেছে, তাদের তা উপভোগ করতে দেওয়া হবে না| 19 কেন? কারণ মন্দলোক গরীব লোকদের আঘাত করে এবং তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে| সে তাদের গ্রাহ্য করে না এবং তাদের জিনিস কেড়ে নেয়| অন্যের তৈরী বাড়ী সে জবরদখল করে| 20 “দুষ্ট লোকরা কখনও সুখী হয় না| তাদের সম্পত্তি তাদের বাঁচাতে পারবে না| 21 যখন তারা খায়, কিছুই অবশিষ্ট থাকে না| সুতরাং তাদের সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হবে না| 22 যখন দুষ্ট লোকের হাতে প্রচুর সম্পদ থাকবে তখনই সে সমস্যার দ্বারা ন্য়ুবতৃ হয়ে যাবে| ঐ লোকের নিজের সঙ্গেই ওর সমস্যা নেমে আসবে! 23 মন্দ লোকরা তাদের আকাঙ্খার সব কিছু আহার করার পর, ঈশ্বর ওদের ওপর তাঁর জ্বলন্ত ক্রোধ বর্ষণ করবেন, ঈশ্বর তাদের খাবার হিসেবে শাস্তি বর্ষণ করবেন| 24 দুষ্ট লোকরা হয়তো লৌহ তরবারী থেকে পালিয়ে য়েতে পারে, কিন্তু পিতল ধনুা অতর্কিতে আক্রমণ করবে| 25 তাম্র শর ওদের শরীর ভেদ করে যাবে এবং ওদের পিঠ ফুঁড়ে বের হবে| তীরের তীক্ষ্ণ ফলা ওদের প্লীহা ভেদ করে যাবে এবং ওরা ভয়ে শিউরে উঠবে| 26 ওদের সমস্ত সম্পদ ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| একটি আগুন ওদের ধ্বংস করবে- একটি আগুন যা কোন মানুষ শুরু করে নি| সেই আগুন বাড়ীর সব কিছুকে ধ্বংস করবে| 27 আকাশ দুষ্ট ব্যক্তির অপরাধ প্রকাশ করে দেবে| তার বিরুদ্ধে সাক্ষী হয়ে আকাশ উঠে দাঁড়াবে| 28 ঈশ্বরের ক্রোধর বন্যায় ওর বাড়ী ধুয়ে মুছে চলে যাবে| 29 মন্দ লোকদের প্রতি ঈশ্বর এমনটাই করবেন| ওদের দেওয়ার জন্য এটাই ঈশ্বরের পরিকল্পনা|”
1 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন: 2 “আমি যা বলি অনুগ্রহ করে শোন, আমাকে সান্ত্বনা দিতে এটাই হোক তোমার পথ| 3 আমার সম্পর্কে ধৈর্য়্য় ধর এবং আমাকে কথা বলতে দাও| আমার বলা শেষ হলে, তোমরা আমায় নিয়ে মজা করতে পারো| 4 “আমি লোকের নামে অভিয়োগ করছি না| আমার অসহিষ্ণুতার য়থেষ্ট কারণ আছে| 5 আমার দিকে দেখ এবং আতঙ্কিত হও| তোমার হাত তোমার মুখের ওপরে রাখ এবং বিস্মযের সঙ্গে তাকিযে দেখ| 6 আমি যখন ভাবি আমার প্রতি কি ঘটেছে, আমি তখন ভয় পাই, আমার শরীর কাঁপতে থাকে! 7 কেন দুষ্ট লোকরা দীর্ঘ জীবন বাঁচে? কেন তারা বৃদ্ধ হয় ও সফল হয়? 8 দুষ্ট লোকরা তাদের সন্তানদের দেখে, তাদের সঙ্গে বড় হতে দেখে| দুষ্ট লোকরা তাদের নাতিদের দেখার জন্যও বেঁচে থাকে| 9 ওদের ঘরবাড়ী নিরাপদে থাকে এবং ওরাও নিঃশঙ্ক থাকে| ওদের শাস্তি দেওয়ার জন্য ঈশ্বর একটি লাঠিও ব্যবহার করেন না| 10 তাদের বলদগুলো সঙ্গম করতে কখনো অপারগ নয়| তাদের গাভীগুলোর বাছুর হয় এবং জন্মের সময়ে বাছুরগুলো মরে যায় না| 11 দুষ্ট লোকরা তাদের সন্তানদের, মেষশাবকের মত খেলা করতে পাঠায়| তাদের সন্তানরা নাচ করতে থাকে| 12 তারা খঞ্জর, বীণা এবং বাঁশির সঙ্গে নাচ করে| 13 মন্দ লোকরা জীবত্কালেই তাদের সাফল্য ভোগ করে| তারপর তারা মারা যায় এবং দুর্ভোগ না ভুগে কবরে চলে যায়| 14 কিন্তু মন্দ লোকরা ঈশ্বরকে বলে, ‘আমাদের একা ছেড়ে দাও! তুমি আমাদের দিয়ে কি করাতে চাও, সে বিষয়ে আমরা পরোযা করি না!’ 15 মন্দ লোকরা আরও বলে, ‘কে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর? আমাদের তাকে সেবা করার দরকার নেই! তার কাছে প্রার্থনা করেই বা কি লাভ?’ 16 “একথা সত্য য়ে দুষ্ট লোকরা তাদের ভবিষ্যত্ স্থির করতে পারে না| আমি ওদের মতামত গ্রহণ করি না| 17 কিন্তু কতবার মন্দ লোকদের আলো নিভে যায়? কতবার মন্দ লোকদের ওপর দুর্গতি ঘনিয়ে আসে? কতবার ঈশ্বর রুদ্ধ হয়ে ওদের শাস্তি দেবেন? 18 কত বার তারা খড়কুটোর মতো উড়ে যায় কিংবা ঝোড়ো বাতাসের মুখে তুষের মত উড়ে যায়? 19 কিন্তু তুমি বলছো, ‘পিতার পাপের জন্য ঈশ্বর তার সন্তানকে শাস্তি দেন|’ না! ঈশ্বরের উচিত্ পাপীদের শাস্তি দেওয়া| তখনই মন্দ লোক বুঝতে পারবে তার নিজের পাপের জন্যই তাকে শাস্তি দেওয়া হল! 20 পাপীকে তার নিজের পতন দেখতে দাও| তাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ক্রোধ অনুভব করতে দাও| 21 এক জন মন্দ লোকের জীবন যখন শেষ হয়ে যায়, এবং সে যখন মারা যায়, তখন সে ফেলে যাওয়া সংসারের কথা চিন্তাও করে না| 22 “কেউই ঈশ্বরকে জ্ঞানের শিক্ষা দিতে পারে না| ঈশ্বর গুরুত্বপূর্ণ লোকদেরও বিচার করেন| 23 এক জন লোক পরিপূর্ণ এবং সফল জীবন অতিবাহিত করে মারা যায়| সে সম্পূর্ণ আরাম ও নিরাপত্তার জীবন কাটিযে ছিল| 24 তার দেহ সুপুষ্ট ছিলো এবং তার হাড়গুলো তখনও শক্ত ছিলো| 25 কিন্তু অন্য এক জনও কঠোর জীবন সংগ্রামের পর দুঃখী হৃদয় নিয়ে মারা গেল| সে কোন দিনই ভালো কিছু উপভোগ করতে পারে নি| 26 শেষ কালে, ওই দুই জন লোকই এক সঙ্গে ধূলিতে শুয়ে থাকবে, উভয়ের দেহই পোকাতে ছেযে যাবে| 27 “কিন্তু আমি জানি তুমি কি চিন্তা করছো, এবং আমি জানি তুমি আমাকে আঘাত করতে চাইছো| 28 তুমি হয়তো বলতে পারো: ‘আমাকে রাজপুত্রের সুন্দর ঘড়বাড়ী দেখাও| এখন দেখাও, কোথায় দুষ্ট লোকরা বাস করে|’ 29 “সত্যই তুমি ভ্রমণকারীর সঙ্গে কথা বলেছো| নিশ্চিত ভাবে তুমি তাদের গল্পকেই গ্রহণ করবে| 30 দুর্গতি যখন আসে, তখন মন্দ লোকরা বিপদ থেকে বেঁচে যায়| ঈশ্বর যখন তাঁর ক্রোধ প্রদর্শন করেন, তারা তখন বেঁচে যায়| 31 মন্দ লোকের মন্দ কাজের জন্য কেউই তার মুখের ওপর সমালোচনা করে না| তার মন্দ কাজের জন্য কেউই তাকে শাস্তি দেয় না| 32 যখন দুষ্ট ব্যক্তিকে কবরে বয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তার কবরের কাছে একজন রক্ষী দাঁড়িয়ে থাকে| 33 সেই মন্দ লোকের জন্য কবরের মাটিও রমণীয হয়ে ওঠে| এবং তার শবযাত্রায হাজার হাজার লোক অংশ নেয়| 34 “তাই, তোমার শূন্যগর্ভ কথা দিয়ে তুমি আমাকে সান্ত্বনা দিতে পারবে না| তোমার উত্তর কোন কাজেই আসবে না!”
1 তখন তৈমনীয ইলীফস উত্তর দিল: 2 “ঈশ্বরের কি তোমার সাহায্যের প্রয়োজন আছে? না! এমনকি এক জন খুব জ্ঞানী লোকও ঈশ্বরের কাছে প্রয়োজনীয় নয়| 3 তুমি যদি ন্যায়পরাযণ হও তাহলে ঈশ্বরের কি কোন সাহায্য হয়? না! অথবা তুমি যদি অনিন্দনীয হও তাহলে তা কি ঈশ্বরের পক্ষে লাভজনক হয়? না! 4 “ইয়োব, তোমার সমীহর কারণেই কি ঈশ্বর তোমাকে সংশোধন করেন? এই কারণেই কি তিনি বিচারে তোমার বিরুদ্ধে আসেন? 5 না, এর কারণ তুমি অনেক পাপ করেছো| ইয়োব, তুমি পাপ করা বন্ধ কর নি| 6 হতে পারে তোমার কোন ভাইকে টাকা ধার দিয়েছিলে, এবং সে য়ে তোমাকে তা ফেরত্ দেবে তা প্রমাণ করার জন্য তোমাকে কিছু দেওয়ার জন্য তুমি তাকে বাধ্য করেছিলে| তুমি হয়তো ঋণের বন্ধক হিসেবে কোন দরিদ্র মানুষের বস্ত্র নিয়েছিলে| হয়তো অকারণেই তুমি এসব করেছিলে| 7 তুমি হয়তো বা ক্ষুধার্ত ও শ্রান্ত মানুষকে খাবার ও জল দাও নি| 8 ইয়োব তোমার প্রচুর খামারবাড়ি আছে| লোকরাও তোমায় সম্মান করে| 9 কিন্তু এমন হতে পারে য়ে তুমি বিধ্বাদের কিছু না দিয়েই ফিরিযে দিয়েছো| হয়তো বা তুমি অনাথদের প্রতারিত করেছো| 10 সেই জন্য তোমার চারদিকে ফাঁদ পাতা রযেছে এবং আকস্মিক সমস্যা তোমায় ভীত করে| 11 সেই কারণেই এটা এত অন্ধকার য়ে তুমি দেখতে পাও না, এবং বন্যার মত জলরাশি তোমায় ডুবিয়ে দেয়| 12 “ঈশ্বর স্বর্গের উচ্চতম স্থানে বাস করেন| দেখ তারাগুলো কত উঁচুতে রযেছে| কিন্তু ঈশ্বর এতই উচেচ রযেছেন য়ে ঈশ্বর তারাগুলোকে নীচের দিকে চেয়ে দেখেন| 13 কিন্তু ইয়োব তুমি বলেছিলে, ‘ঈশ্বর কি জানেন?’ ঈশ্বর কি কালো মেঘের ভেতর দিয়ে দেখতে পান এবং আমাদের বিচার করতে পারেন? 14 ঘন মেঘ আমাদের থেকে তাঁকে আড়াল করে, য়েহেতু তিনি আকাশ সীমার ওপর বহির্দেশে বিচরণ করেন তাই তিনি আমাদের দেখতে পান না|’ 15 “ইয়োব তুমি সেই পুরানো পথেই চলছো য়ে পথে অতীতের মন্দ লোকরা চলেছিল| 16 সেই মন্দ লোকরা তাদের সময়ের আগেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গেছে| বন্যায় তাদের ভিত ভেসে গেছে| 17 ঐ লোকগুলো ঈশ্বরকে বলেছিলো: ‘আমাদের একা ছেড়ে দিন! সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের জন্য কিছুই করতে পারবেন না!’ 18 এবং ঈশ্বরই নানাবিধ ভালো জিনিস দিয়ে ওদের ঘর ভরিয়ে দিয়েছিলেন! না আমি মন্দ লোকের উপদেশ মানতে পারব না| 19 ন্যায়পরাযণ লোকরা ওদের ধ্বংস হতে দেখবে এবং ঐ সব সত্ লোকই সুখী হবে| নির্দোষ লোকরা মন্দ লোকদের উপহাস করবে| 20 ‘সত্যই তোমার শএুরা বিনষ্ট হয়েছে! অগ্নি ওদের সব সম্পদ বালিয়ে দেবে!’ 21 এখন ইয়োব, নিজেকে ঈশ্বরের কাছে সঁপে দাও এবং তাঁর সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্থাপন কর| এটা কর, তুমি অনেক ভালো জিনিস পাবে| 22 এই শিক্ষা গ্রহণ কর| তিনি যা বলেন, তাতে মনোয়োগ দাও| 23 ইয়োব, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসো, তুমি উদ্ধার হয়ে যাবে| কিন্তু তুমি অবশ্যই তোমার তাঁবুগুলি থেকে অহিতকারী মন্দকে দূর করবে| 24 নিজের জমানো সোনাকে আবর্জনার বেশী কিছু ভেবো না, তোমার শ্রেষ্ঠ সোনাকেওনদীর নুড়ি-পাথরের মত তুচ্ছ জ্ঞান কর| 25 এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে তোমার সোনা করে নাও| ঈশ্বরকে তোমার রূপোর স্তূপ হতে দাও| 26 তারপর তুমি ঈশ্বরকে উপভোগ করতে পারবে| তারপর তুমি ঈশ্বরের সামনে দাঁড়াতে পারবে| 27 তুমি তাঁর কাছে প্রার্থনা করবে এবং তিনি তোমার প্রার্থনা শুনবেন| তবেই তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবে| 28 যদি তুমি কিছু করবে বলে মনস্থির করে থাকো তাহলে তা ফলপ্রসূ হবে| এবং তোমার ভবিষ্যত্ অবশ্যই উজ্জ্বল হবে! 29 ঈশ্বর অহঙ্কারী লোকদের লজ্জায় ফেলেন| কিন্তু তিনি বিনযী লোকদের সাহায্য করেন| 30 তখন তুমি, যারা ভুল করে তাদের সাহায্য করতে পারবে| তুমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবে এবং তিনি তাদের ক্ষমা করে দেবেন| কেন? কারণ তুমি শুচি-শুদ্ধ হয়ে যাবে|”
1 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন: 2 “আমি আজ পর্য়ন্ত অভিয়োগ করে যাচ্ছি| কেন? কারণ আমি এখনও ভুগছি| 3 আমার ইচ্ছা হয়, ঈশ্বরকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যায় তা যদি জানতাম, তাহলে আমি সেই জায়গায় য়েতাম| 4 আমি আমার কাহিনী ঈশ্বরের কাছে বলতাম, আমি য়ে নির্দোষ এট প্রমাণ করার জন্য আমার মুখ যুক্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে থাকত| 5 কেমন করে ঈশ্বর আমার প্রশ্নর জবাব দেবেন সেটাই আমি জানতে চাই| আমি ঈশ্বরের উত্তরকে বুঝতে চাই| 6 ঈশ্বর কি আমার বিরুদ্ধে তাঁর শক্তিকে ব্যবহার করবেন? না, তিনি আমার কথা শুনবেন! 7 সেখানে একটি ন্যায়পরাযণ লোক ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে পারে| তখন আমার বিচারক আমাকে মুক্তি দিতে পারেন| 8 “কিন্তু আমি যদি পূর্ব দিকে যাই সেখানে ঈশ্বর নেই| আমি যদি পশ্চিমে যাই, তখনও আমি ঈশ্বরকে দেখতে পাই না| 9 যখন ঈশ্বর উত্তরে কর্মরত থাকেন আমি তাঁকে দেখি না| যখন ঈশ্বর দক্ষিণে আসেন, তখনও তাঁকে দেখতে পাই না| 10 কিন্তু ঈশ্বর জানেন আমি কেমন লোক| তিনি আমাকে পরীক্ষা করছেন এবং তিনি দেখবেন য়ে আমি সোনার মতোই পবিত্র| 11 আমি সর্বদাই ঈশ্বরের চাওযা পথে জীবনধারণ করেছি| আমি কখনও ঈশ্বরকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হইনি| 12 আমি সর্বদাই ঈশ্বরের নির্দেশ মেনে এসেছি| আমি আমার খাবারকে যত না ভালোবাসি, তার থেকে বেশী ভালোবাসি ঈশ্বরের মুখ নিঃসৃত বাণী| 13 “কিন্তু ঈশ্বর কখনও পরিবর্তিত হন না| ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে পারে না| ঈশ্বর যা চান তাই করতে পারেন| 14 আমার প্রতি ঈশ্বরের যা পরিকল্পনা আছে তিনি তাই করবেন| এবং আমার সম্পর্কে তাঁর অনেক পরিকল্পনা আছে| 15 সেই কারণেই আমি ঈশ্বরের দ্বারা আতঙ্কিত| আমি এই জিনিসগুলো বুঝতে পারি| সেই কারণেই আমি ঈশ্বরের সম্পর্কে ভীত| 16 ঈশ্বর আমার হৃদয়কে দুর্বল করে দেন এবং আমি সাহস হারিয়ে ফেলি| সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাকে ভীত করেন| 17 য়ে মন্দ ঘটনাগুলো আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে তা আমার মুখে কালো মেঘের মত ছেযে আছে| সেই অন্ধকার আমাকে চুপ করে থাকতে দেবে না|”
1 “এমন কেন হয় য়ে মানুষের জীবনে যখন মন্দ ঘটনা ঘটতে চলেছে তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর জানেন, কিন্তু তাঁর অনুগামীরা এমনকি অনুমানও করতে পারে না য়ে কখন তিনি সে বিষয়ে কিছু করতে চলেছেন?” 2 “লোকে তাদের জমির সীমারেখা সরিয়ে দেয় আরও জমি দখল করার জন্য| লোকে মেষের পাল চুরি করে তাদের অন্য চারণক্ষেত্রে নিয়ে চলে যায়| 3 তারা অনাথদের গাধা চুরি করে| তারা বিধ্বাদের বলদগুলো বন্ধক রাখে| 4 তারা দরিদ্র লোকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়| সব গরীব লোকই এই মন্দ লোকগুলোর কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হয়| 5 “দরিদ্র লোকগুলো খাবারের সন্ধানে বুনো গাধার মত মরুভূমিতে ঘুরে বেড়ায়| খাদ্যের সন্ধানে তারা খুব সকালে উঠে পড়ে| তাদের ছেলেমেয়েদের খাদ্যের জন্য তারা জনহীন স্থানে খাবার খুঁজে বেড়ায়| 6 দরিদ্র লোকরা মন্দ লোকেদের মাঠে গবাদি পশুর জাব কাটে| মন্দ লোকেদের দ্রাক্ষা ক্ষেত থেকে তারা পড়ে থাকা দ্রাক্ষা নিজেদের জন্য জোগাড় করে| 7 দরিদ্র লোককে সারা রাত্রি বিনা বস্ত্রে শুতে হয়| শীত থেকে নিজেদের রক্ষা করার মত কোন আবরণ তাদের নেই| 8 তারা পাহাড়ের বৃষ্টিতে ভিজে যায়| তাদের কোন আশ্রয় নেই, তাই তারা বড়বড় পাথরগুলোর কাছে গা ঘেঁসাঘেঁসি করে দাঁড়িয়ে থাকে| 9 মন্দ লোকরা কচি কচি বাচচাগুলোকে তাদের মায়ের বুক থেকে টেনে নিয়ে যায়| দুষ্ট লোকরা ধারশোধের টাকা হিসেবে গরীবদের কাছ থেকে তাদের শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়| 10 দরিদ্র লোকদের কোন কাপড়-চোপড় নেই| তারা উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ায়| তারা শস্য়ের বোঝা বয়ে নিয়ে যায়| 11 দরিদ্র লোকরা পিষে জলপাই এর তেল বের করে| যেখানে আঙ্গুর পেষা হয় সেখানে তারা দ্রাক্ষা মর্দন করে| কিন্তু তারা কিছু পান করতে পায় না| 12 এই শহরে যারা মারা যাচ্ছে এমন লোকদের দুঃখের বিষাদময কান্না তুমি শুনতে পাবে| ওই আহত লোকরা সাহায্যের জন্য কাতর হয়ে কাঁদে| কিন্তু ঈশ্বর তাতে মনোয়োগ দেন না| 13 “কিছু লোক আলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে| তারা জানে না ঈশ্বর কি চান| ঈশ্বর য়ে পথে চান, তারা সে পথে জীবন ধারণ করে না| 14 এক জন হত্যাকারী খুব সকালে ওঠে এবং সে দরিদ্র অসহায় লোকদের হত্যা করে| রাত্রিবেলা সে এক জন চোর হয়ে যায়| 15 য়ে লোক য়ৌন অপরাধ করে সে রাত্রির প্রতীক্ষায থাকে| সে মনে করে, ‘কোন লোকই আমাকে দেখতে পাবে না|’ কিন্তু তখনও সে তার মুখ আবৃত করে রাখে| 16 রাতে যখন অন্ধকার নামে, মন্দ লোকরা বাইরে বের হয় এবং অন্যের ঘর ভেঙে প্রবেশ করে| কিন্তু দিনের আলোয, তারা নিজেদের ঘরে নিজেদের বন্দী করে রাখে এবং আলোকে এড়াতে চায়| 17 মন্দ লোকদের কাছে অন্ধকারতম রাত্রিই সকালের মত মনে হয়| হ্যাঁ, তারা ঐ সাংঘাতিক অন্ধকারের ভয়ঙ্করতাকে খুব ভালো করে জানে! 18 “তুমি দাবী কর মন্দ লোকরা শুধু জলে ভাসমান খড়ের মত| তারা য়ে জমি অর্জন করে তা অভিশপ্ত, তাই তারা তাদের জমি থেকে দ্রাক্ষা সংগ্রহ করতে পারে না| 19 শীতের তুষার থেকে খরা এবং তাপ জল শুষে নেয়| একই রকম ভাবে, পাতাল পাপীদের হরণ করে নেয়| 20 তার নিজের মা পর্য়ন্ত তাকে ভুলে যাবে| পোকাদের কাছে ওর দেহটা মিষ্টি লাগবে| লোকে তাকে মনে রাখবে না| অতএব মন্দত্ব একটা লাঠির মত ভেঙে যাবে| 21 মন্দ লোকরা সন্তানহীন নারীদের আঘাত করে| তারা বিধ্বা নারীদের সাহায্য করতে অস্বীকার করে| 22 “মহানুভব লোকদের ধ্বংস করার জন্য মন্দ লোকরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে| মন্দ লোকরা শক্তিশালী হতে পারে কিন্তু ওদের নিজের জীবন সম্পর্কে ওরা নিশ্চিত হতে পারবে না| 23 মন্দ লোকরা খুব অল্প সময়ের জন্য নিরাপদ ও সুনিশ্চিত হতে পারে| ওরা ক্ষমতাসম্পন্ন হতে চাইতে পারে| 24 মন্দ লোকরা অল্প সময়ের জন্য সফল হতে পারে, কিন্তু তারাও চলে যাবে| আর লোকদের মত তাদেরও ফসলের মত কেটে ফেলা হবে| 25 “কন্তু আমি বলি কে আমাকে ভুল বলে প্রমাণ করতে পারে? এবং আমার কথাগুলো কে ঈশ্বরের কাছে বহন করে নিয়ে যাবে?”
1 তখন শূহীয় বিল্দদ উত্তর দিলেন: 2 “ঈশ্বরই শাসক| প্রতিটি লোককে তাঁর সামনে সভয়ে দাঁড়াতে হবে| তাঁর ঊর্দ্ধলোকের রাজ্যে তিনি শান্তি বজায় রাখেন| 3 কোন লোকই তাঁর ঐশ্বরীয সৈন্যবাহিনীকে গুণতে পারে না| ঈশ্বরের আলো সবার ওপর প্রতিভাত হয়| 4 ঈশ্বরের তুলনায় কেই বা অধিকতর পবিত্র? কোন মানুষই প্রকৃত অর্থে পবিত্র হতে পারে না| 5 ঈশ্বরের চোখে চাঁদ পর্য়ন্ত উজ্জ্বল নয়, তারারাও খাঁটি নয়| 6 মানুষ ঈশ্বরের তুলনায় কম খাঁটি| তুলনায়, মানুষ উল্লু এবং কৃমিকীটের মত!”
1 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন: 2 “বিল্দদ, সোফর এবং ইলীফস, এই ক্লান্ত ও শ্রান্ত মানুষটির জন্য তোমরা সত্যিই খুব বড় সহায় হয়েছিলে| সত্যিই তোমরা আমার মস্তবড় উত্সাহদাতা, আমার দুর্বল বাহুকে তোমরা সত্যিই আবার শক্ত করে তুলেছো! 3 সত্যিই, য়ে লোকের কোন প্রজ্ঞা নেই, তাকে তোমরা চমত্কার উপদেশ দিয়েছো! তোমরা য়ে কত জ্ঞানী, তোমরা তা প্রদর্শন করেছো| 4 কে তোমাদের এসব বলতে সাহায্য করেছে? কার আত্মা তোমাদের উত্সাহিত করেছে? 5 “মৃত লোকদের আত্মা, মাটির তলায় জলের ভেতরে ভয়ে কাঁপতে থাকে| 6 কিন্তু ঈশ্বর মৃত্যুর স্থান পরিষ্কার দেখতে পান| মৃত্যু ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে পারে না| 7 ঈশ্বর উত্তর আকাশকে শূন্য লোকে প্রসারিত করে দিয়েছেন| ঈশ্বর পৃথিবীকে শূন্যতায ঝুলিয়ে দিয়েছেন| 8 ঘন মেঘকে ঈশ্বর জলে পরিপূর্ণ করেছেন| কিন্তু সেই বিপুল ভারে, ঈশ্বর, মেঘকে ভেঙে পড়তে দেন না| 9 ঈশ্বর, পূর্ণিমার চাঁদের মুখ ঢেকে দেন| তিনি চাঁদের ওপর মেঘকে আবৃত করে তাকে লুকিয়ে ফেলেন| 10 ঈশ্বর সমুদ্রের ওপর একটি দিগন্ত-রেখা এঁকে দিয়েছেন| সেই দিগন্ত রেখায় দিনরাত্রি মিলিত হয়| 11 ভূগর্ভস্থ থামগুলি আকাশকে ধারণ করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে| ঈশ্বর যখন তাদের তিরস্কার করেন তখন তারা ভয়ে চমকে যায় এবং কাঁপতে থাকে| 12 ঈশ্বরের পরাএম সমুদ্রকে শান্ত করে দেয়| ঈশ্বর তাঁর প্রজ্ঞা দিয়ে রাহাবকে ধ্বংস করেছেন| 13 ঈশ্বর তাঁর নিঃশ্বাস দিয়ে আকাশকে পরিষ্কার করেছেন| ঈশ্বরের হাত পলাযমান সর্পকে বিদ্ধ করেছে| 14 ঈশ্বর যা করেন, এগুলি তার দু’একটি বিস্মযকর উদাহরণ মাত্র| আমরা ঈশ্বরের থেকে কেবলমাত্র ফিসফিস শব্দটুকু বজ্রের মত শুনি| ঈশ্বর য়ে কত শক্তিশালী এবং মহত্ তা কেউই বুঝতে পারে না|”
1 তারপর ইয়োব তাঁর কথা অব্যাহত রাখলেন| ইয়োব বললেন, 2 “একথা সত্যি য়ে ঈশ্বর আছেন| এবং তিনি আছেন এটা যতখানি সত্য, তিনি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এসেছেন- এটাও ততখানি সত্য| ঈশ্বর সর্বশক্তিমান আমার জীবনকে তিক্ত করে তুলেছেন| 3 কিন্তু যতক্ষণ আমার মধ্যে জীবন আছে এবং আমার নাকে ঈশ্বরের জীবনের শ্বাস-প্রশ্বাস বইছে, 4 ততক্ষণ আমার ঠোঁট কোন মন্দ কথা উচ্চারণ করবে না এবং আমার জিভ একটিও মিথ্যা কথা বলবে না| 5 আমি কখনও স্বীকার করব না য়ে তোমরা সঠিক| আমার মৃত্যু পর্য়ন্ত আমি বলে যাবো য়ে আমি নির্দোষ| 6 য়ে সঠিক কাজ আমি করেছি, তা আমি দৃঢ় ভাবে ধরে থাকবো| আমি সত্ পথে বাঁচা থেকে বিরত হব না| যত দিন পর্য়ন্ত আমি বাঁচবো, তত দিন পর্য়ন্ত আমি যা যা করেছি সে সম্বন্ধে আমার কোন অপরাধ বোধ থাকবে না| 7 “আমার শএু য়েন এক জন মন্দ ব্যক্তির মত ব্যবহার পায়| য়ে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মাথা তুলবে সে য়েন একজন মন্দ ব্যক্তির মত ব্যবহার পায়| 8 যদি কোন লোক ঈশ্বরের তোযাক্কা না করে, তবে মৃত্যুর সময়ে সেই লোকের জন্য কোন আশাই নেই| ঈশ্বর যখন তার জীবন হরণ করবেন তখন সেই লোকের জন্য কোন আশাই থাকবে না| 9 ঐ মন্দ লোকটি সংকটে পড়বে| সে সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের কাছে কেঁদে পড়বে| কিন্তু ঈশ্বর তার কথা শুনবেন না| সে কি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে আনন্দ লাভ করবে? সে কি সব সময় ঈশ্বরকে ডাকবে? না! 10 কিন্তু ঐ লোকের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলার আনন্দ উপভোগ করা উচিত্ ছিল| ঐ লোকের সর্বক্ষণ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা উচিত্ ছিল| 11 “আমি তোমাকে ঈশ্বরের ক্ষমতা সম্পর্কে বলবো, আমি তোমার কাছে ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের পরিকল্পনা গোপন করবো না| 12 তুমি নিজের চোখেই ঈশ্বরের ক্ষমতা দেখেছো| তাহলে তুমি কেন অর্থহীন কথাবার্তা বলছো? 13 মন্দ লোকরা ঈশ্বরের কাছ থেকে শুধু এইটুকুই পাবে| নিষ্ঠুর লোকরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছ থেকে এই সবই পাবে| 14 এক জন মন্দ লোকের অনেক সন্তানাদি থাকতে পারে| কিন্তু তার সন্তানরা যুদ্ধে নিহত হবে| এক জন মন্দ লোকের সন্তানরা য়থেষ্ট খাদ্য পাবে না| 15 তার সন্তানরা, যারা বেঁচে যাবে তারা রোগ দ্বারা কবরস্থ হবে| 16 এক জন মন্দ লোকের প্রচুর রূপো থাকতে পারে কিন্তু তার কাছে সেটি আবর্জনার মতই হবে| তার কাছে প্রচুর বস্ত্র থাকতে পারে তাও তার কাছে কাদার স্তূপের মতো হবে| 17 কিন্তু এক জন সত্ লোক তার বস্ত্রাদি পাবে| নির্দোষ লোক তাদের রূপো পাবে| 18 এক জন মন্দ লোক পাখীর বাসার মত একটা বাড়ী বানাতে পারে| একজন রক্ষী য়েমন মাঠে ঘাসের কুটীর বানায় সে হয়ত তার বাড়ীটা ঐরকমই বানাবে| 19 এক জন মন্দ লোক যখন বিছানায শুতে যায়, তখন সে ধনী থাকতে পারে, কিন্তু যখন সে তার চোখ খুলবে তখন তার সব সম্পদ চলে যাবে| 20 বন্যার মতো ভয়ঙ্কর জিনিস ধুয়ে নিয়ে যাবে| একটা ঝড় তার সব কিছু মুছে নিয়ে যাবে| 21 পূবের বাতাস তাকে উড়িযে নিয়ে যাবে এবং সে চলে যাবে| একটা ঝড় তাকে তার জায়গা থেকে উড়িযে নিয়ে যাবে| 22 মন্দ লোকরা হয়তো ঝড়ের শক্তি থেকে পালিয়ে য়েতে চেষ্টা করবে| কিন্তু ঝড় তাকে ক্ষমাহীন ভাবে আঘাত করবে| 23 মন্দ লোকগুলো যখন ছুটে পালাবে, তখন লোকরা হাততালি দেবে| মন্দ লোকরা যখন তাদের বাড়ী থেকে দৌড় দেবে তখন লোকেরা শিস্ দেবে|”
1 “এমন জায়গা আছে যেখানে মানুষ রূপো পায়, এমন জায়গা আছে যেখানে মানুষ সোনা গলিযে খাঁটি করে| 2 মানুষ মাটি খুঁড়ে লোহা বের করে| পাথর গলিযে তামা নিষ্কাসন করে| 3 কর্মীরা গুহার মধ্যে আলো নিয়ে যায়| ওরা গুহার গভীরে অন্বেষণ করে| গভীর অন্ধকারে ওরা পাথর খোঁজে| 4 খনি-দণ্ডের ওপর কাজ করবার সময় খনির কর্মীরা গভীর পর্য়ন্ত মাটি খোঁড়ে| মানুষ যেখানে বাস করে তারা তার চেয়েও অনেক গভীর পর্য়ন্ত খোঁড়ে, এমন গভীরে যেখানে লোক আগে কখনও যায় নি| তারা দড়িতে অনেক অনেক গভীর পর্য়ন্ত ঝুলতে থাকে| 5 মাটির ওপরে ফসল ফলে, কিন্তু মাটির তলা সম্পূর্ণ অন্যরকম, সব কিছুই য়েন আগুনের দ্বারা গলিত হয়ে রযেছে| 6 মাটির নীচে নীলকান্ত মণি এবং খাঁটি সোনা রযেছে| 7 বুনো পাখিরা মাটির নীচের পথ সম্পর্কে কিছুই জানে না| কোন শকুন সেই অন্ধকার পথ দেখে নি| 8 বন্য পশুরাও কোন দিন সে পথে হাঁটে নি| সিংহও কোন দিন সেই পথে হাঁটে নি| 9 শ্রমিকরা দৃঢ়তম পাথরকেও ভেঙে ফেলে| ঐ শ্রমিকরা সমস্ত পর্বত খুঁড়ে খনি উন্মুক্ত করে| 10 শ্রমিকরা পাথর কেটে সুড়ঙ্গ তৈরী করে| তারা সব রকমের দামী পাথর দেখতে পায়| 11 শ্রমিকরা জলকে বাঁধ্বার জন্য বাঁধ তৈরী করে| তারা লুকানো সম্পদকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসে| 12 “কিন্তু প্রজ্ঞা কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে? আমরা কোথায় বোধশক্তি খুঁজতে যাবো? 13 আমরা জানি না প্রজ্ঞা কি মূল্যবান জিনিস| পৃথিবীর লোক মাটি খুঁড়ে প্রজ্ঞা পেতে পারে না| 14 গভীর মহাসমুদ্র বলে, ‘আমার কাছে প্রজ্ঞা নেই|’ সমুদ্র বলে, ‘আমার কাছে প্রজ্ঞা নেই|’ 15 সব চেয়ে খাঁটি সোনার বিনিময়েও তুমি প্রজ্ঞা কিনতে পারবে না| পৃথিবীতে প্রজ্ঞা কেনার মতো য়থেষ্ট রূপো নেই| 16 ওফীরের সোনা বা অকীক মণি বা নীলকান্ত মণি দিয়েও প্রজ্ঞা কেনা যায় না| 17 প্রজ্ঞা সোনা ও স্?টিকের থেকেও মূল্যবান| এমনকি মূল্যবান রত্নখচিত সোনাও প্রজ্ঞা কিনতে পারে না| 18 প্রবাল বা মণির চেয়েও প্রজ্ঞা মূল্যবান| মুক্তোর থেকেও প্রজ্ঞা মূল্যবান| 19 কূশদেশীয পোখরাজ মণিও প্রজ্ঞার মতো সমমূল্যের নয়| তুমি খাঁটি সোনা দিয়েও প্রজ্ঞা কিনতে পারবে না| 20 “তাহলে প্রজ্ঞা কোথা থেকে আসে? বোধশক্তি খুঁজতে আমরা কোথায় যাবো? 21 পৃথিবীর প্রত্যেকটি জীবন্ত বিষয়ের থেকেই প্রজ্ঞা নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে| আকাশের পাখিরা পর্য়ন্ত প্রজ্ঞাকে দেখতে পায় না| 22 মৃত্যু ও ধ্বংস বলে, ‘আমরা প্রজ্ঞাকে খুঁজে পাই নি| আমরা শুধু তার সম্পর্কে গুঞ্জন শুনেছি|’ 23 “একমাত্র ঈশ্বরই প্রজ্ঞার পথ জানেন| একমাত্র ঈশ্বরই জানেন প্রজ্ঞা কোথায় থাকে| 24 ঈশ্বর পৃথিবীর প্রান্ত পর্য়ন্ত দেখতে পান| আকাশের নীচে সব কিছুই ঈশ্বর দেখতে পান| 25 ঈশ্বর বাযুর গুরুত্ব নিরূপণ করেছেন| তিনিই বৃষ্টির নিয়ম এবং সেখানে কতটা জল থাকবে এবং মেঘ গর্জনের পথ স্থির করেছেন| 26 27 সেই সময় ঈশ্বর প্রজ্ঞাকে দেখেছিলেন এবং এসম্পর্কে ভেবেছিলেন| ঈশ্বর দেখিয়েছিলেন প্রজ্ঞা কত মূল্যবান| এবং ঈশ্বরই প্রজ্ঞার প্রতীক|” 28 ঈশ্বর মানুষকে বললেন: “প্রভুকে শ্রদ্ধা করো ও ভয় কর সেটাই প্রজ্ঞা| কোন মন্দ কাজ করো না এটাই সর্বোত্তম উপল?|”
1 ইয়োব তাঁর কথোপকথন চালিযে গেলেন| ইয়োব বললেন: 2 “কয়েক মাস আগে আমার জীবন য়েমন ছিলো, আমার জীবন তেমন হোক এই আশা করি| সেই সময় ঈশ্বর আমার ওপর নজর রাখতেন, আমার বিষয়ে তিনি যত্ন নিতেন| 3 সেই সময় ঈশ্বর আমার ওপর জ্যোতি প্রদান করতেন| তাই আমি অন্ধকারেও পথ হাঁটতে পারতাম| ঈশ্বর আমাকে বাঁচার প্রকৃত পথ দেখাতেন| 4 য়ে দিনগুলিতে আমি সফলকাম হয়েছিলাম, এবং ঈশ্বর আমার সঙ্গে ছিলেন, আমি সেই দিনগুলির আশায় থাকি| সেই দিনগুলিতে ঈশ্বর আমার গৃহকে আশীর্বাদ করেছিলেন| 5 যখন ঈশ্বর সর্বশক্তিমান আমার সঙ্গে ছিলেন এবং আমার সন্তান-সন্ততি আমার চারপাশে ছিল, আমি সেই দিনগুলি আকাঙ্খা করি| 6 তখন জীবনটা খুব সুন্দর ছিল| তখন আমি ননী দিয়ে আমার পা ধুয়েছি, তখন আমার কাছে প্রচুর পরিমাণে উত্তম মানের জলপাই তেল ছিল| 7 “তখন এমনি দিন ছিল যখন শহরের প্রবেশষ্ঠারে সর্বসাধারণের সভায আমি বয়স্ক লোকদের সঙ্গে বসতাম| 8 সেখানে প্রত্যেকে আমায় শ্রদ্ধা করতো| যুবকরা যখন আমাকে দেখতে পেতো তখন তারা সরে দাঁড়াতো| এমনকি বৃদ্ধরাও উঠে দাঁড়াত| আমার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাবার জন্য ওরা উঠে দাড়াত| 9 জন নেতারা কথা বলা বন্ধ করে দিত এবং মুখের মধ্যে হাত দিয়ে অন্যান্য লোকদের চুপ করতে ইঙ্গিত করতো| 10 এমনকি গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও মৃদু স্বরে কথা বলতেন| হ্যাঁ, মনে হতো, তাঁদের জিভ য়েন তালুতে আটকে গেছে| 11 আমি যা বলতাম লোকে তা শুনতো এবং আমার সম্পর্কে তারা ভালো কথা বলতো| আমি কি করতাম লোকে দেখতো এবং তারা আমার প্রশংসা করতো| 12 কেন? কারণ যখন দরিদ্র লোক সাহায্য চেয়েছে, আমি সাহায্য করেছি| এবং য়ে অনাথদের দেখাশোনা করার কেউ নেই, তাদের আমি সাহায্য করেছি| 13 মৃতপ্রায় মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করেছে| সমস্যা-জর্জর বিধ্বাকে আমি সাহায্য করেছি| 14 সঠিক পথে জীবনযাপনই আমার বস্ত্র ছিল| আমার শিরস্ত্রাণ ছিল আমার ন্যায়| 15 আমি অন্ধের কাছে চোখের মত ছিলাম| তারা যেখানে য়েতে চাইতো আমি নিয়ে য়েতাম| আমি খঞ্জলোকের কাছে তাদের পায়ের মত ছিলাম| তারা যেখানে য়েতে চাইত আমি বয়ে নিয়ে য়েতাম| 16 আমি দরিদ্র লোকদের পিতার মত ছিলাম| যাদের আমি একটুও চিনতাম না তাদেরও আমি সাহায্য করেছি, আদালতে তাদের মামলা জিতিযেছি| 17 আমি দুষ্ট ব্যক্তির ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করেছি এবং তাদের হাত থেকে নির্দোষ লোকদের বাঁচিয়েছি| 18 আমি সর্বদাই আমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভেবেছি, আমি দীর্ঘজীবন বেঁচে থেকে বৃদ্ধ হব| 19 আমি ভেবেছি আমি সেই বৃক্ষের মত স্বাস্থ্য়বান ও প্রাণবন্ত হব য়ে গাছের শিকড়ে প্রচুর জল আছে এবং যার শাখাপ্রশাখা শিশিরে সিক্ত হয়ে থাকে| 20 আমি ভেবেছি প্রত্যেকটি নতুন দিন উজ্জ্বলতর হবে এবং নতুন সম্ভাবনায় ভরে উঠবে| 21 “অতীতে লোকরা আমার কথা শুনতো| আমার উপদেশের অপেক্ষায তারা চুপ করে থাকতো| 22 যারা আমার কথা শুনত, আমার বলা শেষ হওয়ার পর তাদের আর কিছুই বলার থাকতো না| আমার কথা সুন্দর ভাবে তাদের কানে প্রবেশ করতো| 23 য়েমন করে লোক বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করে, তেমনি তারা আমার বলার অপেক্ষায থাকতো| তারা য়েন বসন্তের বৃষ্টির মত আমার বাক্য-ধারা পান করতো| 24 আমি যখনই ওদের সঙ্গে হেসে কথা বলেছি ওরা এত অবাক হয়ে য়েত য়ে, আমি য়ে ওদের সঙ্গে কথা বলছি ওরা এটা বিশ্বাসই করতে পারত না| আমার হাসিতে ওরা ভাল বোধ করেছে| 25 যদিও আমি তাদের নেতা ছিলাম তবু আমি তাদের সঙ্গে থাকাই পছন্দ করতাম| আমি সভাসদসহ একজন রাজার মত| দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের দুঃখের মধ্যে তাদের শান্তি দিতাম|
1 কিন্তু এখন, যারা আমার চেয়েও বয়সে ছোট তারা আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করে| এবং তাদের পিতারা এতোই অপদার্থ ছিল য়ে, আমার মেষগুলোকে য়ে কুকুর পাহারা দেয়- আমি ওদের সেই কুকুরের সঙ্গেও রাখতে চাইনি| 2 ঐসব যুবকের পিতারা এতোই দুর্বল য়ে ওরা আমার সাহায্যে আসবে না| তারা এখন বৃদ্ধ ও ক্লান্ত হয়েছে, তাদের পেশীগুলো এখন আর শক্ত ও মজবুত নেই| 3 তারা মৃত মানুষের মতো অনাহারে শুকিয়ে রযেছে| তাই তারা মরুভূমির শুকনো ধূলো খায়| 4 তারা মরুভূমির নোনা মাটির গাছ উপড়ে নেয়| তারা মরুভূমির এক রকম গাছের শিকড় খায়| 5 তারা তাদের দল থেকে বিতাড়িত হয়েছে| লোকে এমন ভাবে ওদের দিকে চিত্কার করে য়েন ওরা চোর| 6 তারা নদীর শুকনো উপত্যকায, পাহাড়ের গুহায অথবা মাটির গর্তে বাস করতে বাধ্য হয়| 7 তারা মরুভূমির ঝোপঝাড়ে গাধার মত ডাক ছাড়ে এবং কাঁটাঝোপের নীচে গাদাগাদি করে জমা হয়| 8 তারা নামহীন একদল অপদার্থ লোক যারা নিজেদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে! 9 “এখন ঐসব লোকদের পুত্ররা আমায় নিয়ে গান বেঁধে আমায় উপহাস করে| আমার নামটাই এখন ওদের কাছে একটা বাজে শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে| 10 এখন ঐ যুবকরা আমায় ঘৃণা করে| তারা আমার থেকে দূরে দাঁড়ায| তারা নিজেদের আমার থেকে ভালো মনে করে| তারা, এমনকি আমার মুখে থুতুও দেয়! 11 ঈশ্বর আমার ধনুক থেকে গুণ (ছিলা) কেড়ে নিয়ে আমায় দুর্বল করে দিয়েছেন| ঐ মন্দ লোকরা ওদের সমস্ত ক্রোধ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে| 12 তারা আমার ডানদিক থেকে আক্রমণ করে| তারা আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে| আমার মনে হয় য়েন একটা শহরকে আক্রমণ করা হল: আমাকে আক্রমণ করে ধ্বংস করার জন্য তারা আমার প্রাচীরে একটা রাস্তা তৈরী করেছে| 13 তারা আমার রাস্তা ছিন্ন-ভিন্ন করে দিয়েছে| তারা আমাকে ধ্বংস করতে সফল হয়েছে| তাদের থামাবার কেউ নেই| 14 তারা একটা সৈন্যদলের মত যারা দেওয়াল ভেঙে একটা বড় গর্ত করেছে এবং পাথর কুচির ওপর দিয়ে গড়িযে গড়িযে আমার ঘাড়ে পড়েছে| 15 সন্ত্রাস আমাকে গ্রাস করেছে| আমার সম্মান বাতাসের মত মুছে গেছে| আমার নিরাপত্তা মেঘের মতোই অদৃশ্য হয়ে গেছে| 16 “আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে এবং আমি খুব শীঘ্রই মারা যাবো| দুর্ভোগের দিন আমাকে আঁকড়ে ধরেছে| 17 রাতে আমার হাড়ে ব্যথা করে| আমার যন্ত্রণা বন্ধ হয় না| 18 ঈশ্বর আমার বস্ত্র কেড়ে নিয়েছেন, এবং আমার বস্ত্র মুচড়ে বিকৃত আকার করে দিয়েছেন| 19 ঈশ্বর আমায় কাদায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন এবং আমি ধূলা ও ছাই এর মত হয়ে গিয়েছি| 20 ঈশ্বর, আপনার সাহায্যের জন্য আমি আপনার কাছে কাঁদি কিন্তু আপনি শোনেন না| আমি দাঁড়িয়ে পড়ে প্রার্থনা করি, কিন্তু আমার দিকে আপনি কোন মনোয়োগ দেন না| 21 “ঈশ্বর, আপনি আমার প্রতি নীচ ব্যবহার করেছেন| আমাকে আঘাত করবার জন্য আপনি আপনার ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন| 22 ঈশ্বর, আপনি শক্তিশালী বাতাসকে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে য়েতে দিয়েছেন| আপনি আমাকে ঝড়ের মধ্যে ফেলেছেন| 23 আমি জানি আপনি আমায় মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবেন| প্রত্যেকটি জীবন্ত ব্যক্তি অবশ্যই মারা যাবে| 24 কিন্তু, য়ে ইতিমধ্যেই বিধ্বস্ত ও সাহায্যের জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছে, তাকে নিশ্চয়ই কোন লোক আঘাত করবে না| 25 ঈশ্বর, আপনি জানেন য়ে, য়ে লোকরা সংকটে পড়েছিলো আমি তাদের জন্য কেঁদেছিলাম| আপনি জানেন য়ে দরিদ্র লোকেদের জন্য আমার অন্তর কতখানি কাতর ছিলো| 26 কিন্তু যখন আমি ভালো জিনিস চাইলাম, তখন বিনিময়ে খারাপ জিনিস পেলাম| যখন আমি আলো চাইলাম, অন্ধকার এলো| 27 আমি ভেতরে ভেতরে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছি| আমার দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না| আমি দিনের পর দিন ভুগে চলেছি| 28 আমি সব সময়ই দুঃখী এবং বিমর্ষ| আমি মণ্ডলীর মধ্যে দাঁড়িয়ে চিত্কার করে সাহায্য চাই| 29 মরুভূমির বুনো কুকুর এবং উটপাখীর মত আমি বরাবরই নিঃসঙ্গ| 30 আমার চামড়া পুড়ে খোসা হয়ে উঠে যাচ্ছে| জ্বরে আমার দেহ উত্তপ্ত হয়ে আছে| 31 আমার বীণা দুঃখের গান গাইতে শুরু করেছে| আমার বাঁশিও দুঃখের কান্নায় ভরে উঠেছে|
1 “আমি আমার চোখের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি| এমন দৃষ্টি দিয়ে আমি কোন মেয়েকে দেখবো না য়ে দৃষ্টি আমার কামলালসাকে চরিতার্থ করবার জন্য ঐ মেয়েকে পেতে আমায় বাধ্য করবে| 2 উচেচর ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, মানুষের জন্য কি করেন? উচেচর ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, মানুষকে কি দেন? 3 মন্দ লোকদের জন্য ঈশ্বর সমস্যা ও ধ্বংস প্রেরণ করেন এবং যারা মন্দ কাজ করে তাদের জন্য পাঠান বিপর্য়য| 4 আমি যা করি ঈশ্বর সবই জানেন এবং তিনি আমার প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করেন| 5 “আমি মানুষকে মিথ্যা বলিনি ও তাদের প্রতারিত করতে চাইনি! 6 ঈশ্বর যদি যথায়থ মানদণ্ডও ব্যবহার করেন, তিনি দেখবেন আমি নির্দোষ| 7 যদি আমার পদক্ষেপ যথার্থ পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়ে থাকে, যদি আমার চোখ আমায় মন্দ কাজ করতে পরিচালিত করে থাকে, যদি আমার হস্তদ্বয পাপে কলঙ্কিত হয়ে থাকে, 8 তাহলে, আমার চাষের ফসল য়েন অন্যরা খায় এবং আমার চাষের ফসল য়েন তারা তোলে| 9 “যদি আমি কখনো অন্য কোন নারীকে কামনা করে থাকি বা আমার প্রতিবেশীর দরজায তার স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করে থাকি, 10 তাহলে আমার স্ত্রী য়েন অন্য পুরুষের জন্য রান্না করে এবং অন্য পুরুষরা য়েন তার সঙ্গে শয়ন করে| 11 কেন? কারণ য়ৌনপাপ হল লজ্জাকর| এটা শাস্তিযোগ্য পাপ| 12 য়ৌনপাপ হল এমন এক আগুন যা সবকিছু ধ্বংস হওয়া পর্য়ন্ত জ্বলতে থাকে| আমি সারা জীবন যা করেছি এটা তা ধ্বংস করে দিতে পারে| 13 “যখন আমার বিরুদ্ধে আমার ক্রীতদাসরা অভিয়োগ করেছিল তখন আমি যদি তাদের প্রতি ন্যায়বিচার না করে থাকি, 14 তাহলে ঈশ্বরের মুখোমুখি হয়ে আমি কি করবো? যখন ঈশ্বর জিজ্ঞাসা করবেন আমি কি করেছি, তখন আমি কি বলবো? 15 প্রত্যেকে তার মায়ের গর্ভে জন্মায়| আমি আমার মায়ের গর্ভে জন্মেছি, আমার এীতদাসরা তাদের মায়ের গর্ভে| অতএব সেই দিক থেকে আমাতে আর আমার এীতদাসদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই| 16 “দরিদ্র লোকদের সাহায্য করতে আমি কখনও বিমুখ ছিলাম না| আমি বিধ্বাদের সাহায্য করতে কখনো অস্বীকার করিনি| 17 খাদ্যের বিষয়ে আমি কখনও স্বার্থপর হইনি| আমি সর্বদাই অনাথদের খাবার দিয়েছি| 18 আমার সারা জীবন ধরে আমি পিতৃীন সন্তানদের পিতার মত ছিলাম| আমার সারা জীবন ধরে আমি বিধ্বাদের সাহায্য করেছি| 19 আমি যখনই বস্ত্রহীন মানুষকে, দরিদ্র মানুষকে, জামার অভাবে কষ্ট পেতে দেখেছি, 20 আমি সর্বদাই তাদের বস্ত্র দিয়েছি| ওদের উষ্ণ রাখার জন্য আমার নিজের ভেড়া থেকে আমি পশম দিয়েছি| এবং ওরা ওদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে আমায় আশীর্বাদ করেছে| 21 যদিও আমি জানতাম য়ে আমি আদালতের সমর্থন পাবো, তবু আমি কখনো অনাথদের ভয় দেখাই নি| 22 আমি যদি কখনও তা করে থাকি, তাহলে আমার বাহু কাঁধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যাবে| 23 আমি ঈশ্বরের শাস্তিকে ভয় পাই| তিনি যখন উঠে দাঁড়ান আমি তাঁর সামনে দাঁড়াতে পারি না| 24 “আমি আমার সম্পদের ওপর কখনই ভরসা করি নি| ঈশ্বর আমায় সাহায্য করবেন এটাই আমার বড় ভরসা| খাঁটি সোনাকেও আমি কখনও বলি নি, ‘তুমিই আমার ভরসা|’ 25 আমি বিত্তবান ছিলাম| কিন্তু তা আমাকে অহঙ্কারী করে নি| আমি অনেক ধনসম্পদ উপার্জন করেছি| কিন্তু অর্থ আমাকে সুখী করে নি| 26 আমি কখনও উজ্জ্বল সূর্য় বা সুন্দর চাঁদের পূজো করি নি| 27 চাঁদ ও সূর্য়কে পূজো করার মতো অতখানি বোকা আমি ছিলাম না| 28 ওটাও শাস্তিযোগ্য পাপ| যদি আমি ওইগুলোর পূজো করতাম তাহলে আমি উচেচ অবস্থিত ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের প্রতি অবিশ্বস্ততার কাজ করতাম| 29 “আমার শএুরা যখন ধ্বংসপ্রাপ্ত হল আমি কখনই সুখী হই নি| যখন আমার শএুদের জীবনে অঘটন ঘটেছে, তখন আমি তাদের প্রতি কখনও উপহাস করিনি| 30 আমার শএুদের অভিশাপ দিয়ে বা তাদের মৃত্যু কামনা করে আমি কখনও নিজের মুখকে পাপ করতে দিই নি| 31 আমার তাঁবুর প্রত্যেকেই জানে য়ে আমি সর্বদাই আমার অতিথিদের য়থেষ্ট খাদ্য দিয়েছি| 32 আমি সর্বদাই ভবঘুরেদের আমার ঘরে ডেকে এনেছি যাতে ওদের রাস্তায় ঘুমাতে না হয়| 33 অন্য লোকরা তাদের পাপ গোপন করার চেষ্টা করে| কিন্তু আমি আমার অপরাধ গোপন করি নি| 34 লোকে কি বলতে পারে সে নিয়ে আমি কোন দিনই ভীত হই নি| সেই ভয় কোন দিন আমাকে চুপ করাতে পারে নি| আমি কোন দিনই বাইরে য়েতে দ্বিধাবোধ করি নি| আমি লোকের ঘৃণায কোন দিন বিচলিত হইনি| 35 “এই য়ে, আমি চাই কেউ আমার কথা শুনুক! এই রইল আমার স্বাক্ষর আমার অভিয়োগের ওপর| এখন ঈশ্বর সর্বশক্তিমান য়েন আমায় একটা আধিকারিকী উত্তর দেন| আমি চাই, তাঁর মতে আমি যা ভুল করেছি, তা তিনি লিখে ফেলুন| 36 তারপর আমি সেটা কাঁধে পরে নেব| মাথার মুকুটের মত আমি তা ধারণ করবো| 37 যদি ঈশ্বর তা করতেন, তাহলে আমিও আমার সব কাজের ব্যাখ্যা দিতে পারতাম| আমি এক জন রাজপুত্রের মত তাঁর কাছে য়েতে পারতাম| 38 “আমার জমি আমি কারও কাছ থেকে চুরি করি নি| কেউ আমার সম্পর্কে চুরির অভিয়োগ তুলতে পারবে না| 39 জমি থেকে য়ে খাদ্য আমি পেয়েছিলাম তার জন্য আমি আমার কৃষককে মূল্য দিয়েছিলাম|আমি কখনো জমির ভাড়াটেদের সঙ্গে দুর্য়্ববহার করিনি| 40 যদি আমি কখনও এই সব মন্দ কাজ করে থাকি, তাহলে আমার জমিতে গম এবং বার্লির বদলে য়েন কাঁটা-ঝোপ ও দুর্গন্ধ লতাপাতা জন্মায়!” ইয়োবের কথা শেষ হল|
1 তখন ইয়োবের তিনজন বন্ধু তাকে উত্তর দেওয়া থেকে বিরত হলেন| তাঁরা বিরত হলেন কারণ তাঁরা দেখালেন য়ে ইয়োব য়ে নির্দোষ সে বিষয়ে তাঁরা একেবারে দৃঢ় রত্যয় ছিলেন| 2 কিন্তু বারখেলের পুত্র ইলীহূ সেখানে উপস্থিত ছিল| বারখেল ছিল বূষীয বংশধর| (বূষ ছিল রাম পরিবারের একজন|) ইলীহূ ইয়োবের ওপর ভীষণ রেগে গেল| কারণ ইয়োব ভেবেছিল য়ে সে ঈশ্বরের চেয়েও ধার্মিক| 3 ইলীহূ ইয়োবের তিনজন বন্ধুর ওপরেও রেগে ছিল| কেন? কারণ ইয়োবের তিনজন বন্ধু ইয়োবের প্রশ্নর উত্তর দিতে পারছিল না| তবু তারা ইয়োবকে দোষী বলে অভিযুক্ত করেছিল| 4 ইলীহূই সেখানে সব থেকে কনিষ্ঠ ছিল, তাই সবার কথা শেষ হওয়া পর্য়ন্ত সে অপেক্ষা করছিল| তখন তার মনে হল সে কথা বলা শুরু করতে পারে| 5 কিন্তু সেই সময় সে দেখলো, ইয়োবের তিন বন্ধুর আর কিছুই বলার নেই| তাই সে রেগে গেল| 6 তখন ইলীহূ (বূষ পরিবার উদ্ভ্ূত বারখেলের পুত্র) কথা বলতে শুরু করলো| সে বলল:আমি এক জন যুবক| আপনারা বয়স্ক ব্যক্তি| সেই জন্য আমি যা ভাবছি তা বলতে আমি ভয় পাচ্ছি| 7 আমি নিজের মনে ভেবেছি, ‘বয়স্ক লোকরা আগে কথা বলবে| বয়স্ক লোকরা বহুদিন জীবিত আছেন| তাই তাঁরা বহু বিষয়ে শিক্ষা করেছেন|’ 8 কিন্তু ঈশ্বরের আত্মাই এক জনকে জ্ঞানী করে| ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের সেই নিঃশ্বাস মানুষের বোধশক্তিকে সব কিছু বুঝতে সাহায্য করে| 9 শুধুমাত্র বৃদ্ধ লোকরাই জ্ঞানী মানুষ নয়| কোনটা প্রকৃত ঠিক তা শুধুমাত্র বৃদ্ধ লোকরাই বোঝে এমনও নয়| 10 তাই, আমার কথা শুনুন! আমি কি ভাবছি তা আপনাদের বলবো| 11 আপনারা যখন কথা বলছিলেন আমি তখন অপেক্ষা করছিলাম| আমি আপনাদের যুক্তিসমূহ শুনেছি এবং যথাযোগ্য উত্তর দেবার জন্য আপনাদের প্রচেষ্টা দেখেছি| ইয়োবকে আপনারা য়ে উত্তর দিয়েছেন তা আমি শুনেছি| 12 আপনারা যা বলেছেন আমি তা যত্ন করে শুনেছি| আপনাদের মধ্যে কেউই ইয়োবকে তিরস্কার করেননি| আপনাদের মধ্যে কেউই ওঁর যুক্তির উত্তর দেননি| 13 আপনাদের প্রজ্ঞা আছে এ কথা আপনাদের তিন জনের বলা উচিত্ হয়নি| মনুষ্য জাতি নয়, শুধুমাত্র ঈশ্বর য়েন তাঁকে তর্কযুদ্ধে পরাজিত করেন| আপনারা অবশ্যই যুক্তির উত্তর দেবেন, সাধারণকে নয়| 14 ইয়োব তাঁর যুক্তিগুলো আমার কাছে বলেন নি| তাই, আপনারা তিন জন য়ে যুক্তিগুলি উত্থাপন করেছিলেন, আমি তা বলবো না| 15 ইয়োব, এই তিন জন যুক্তি হারিয়ে ফেলেছে| ওঁদের আর বেশী কিছু বলার নেই| ওঁদের আর বেশী কিছু উত্তরও নেই| 16 ইয়োব, এই তিন ব্যক্তি আপনাকে উত্তর দেবে- আমি এমন প্রতীক্ষা করছিলাম| কিন্তু ওঁরা চুপ করে গেলেন| ওঁরা আপনার সঙ্গে তর্ক বন্ধ করে দিলেন| 17 তাই, এখন আমি আপনাকে আমার উত্তর দেবো| হ্যাঁ, আমি যা জানি তা আপনাকে বলব| 18 আমার এত কিছু বলার আছে য়ে আমার প্রায় বিস্তারিত হওয়ার উপক্রম| 19 আমি একটি দ্রাক্ষারসের থলির মত যা এখনও খোলা হয় নি| আমি একটি নতুন দ্রাক্ষারসের আধারের মতো য়েটি প্রায় ফেটে গিয়ে খোলবার উপক্রম হয়েছে| 20 আমাকে কথা বলতেই হবে এবং আমার ভেতরের বাষ্প বার করে দিতে হবে| আমাকে অবশ্যই ইয়োবের যুক্তির উত্তর দিতে হবে| 21 আমি কারো প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাব না| আমি কারো স্তাবকতা করব না| 22 আমি এক জনের সঙ্গে অন্য এক জন লোকের চেয়ে ভালো আচরণ করতে পারি না| আমি যদি তা করি আমার সৃষ্টিকর্তা আমায় শাস্তি দেবেন|
1 “ইয়োব, এখন আমার কথা শুনুন| আমি যা বলি তা মন দিয়ে শুনুন| 2 আমি বলবার জন্য প্রস্তুত| 3 আমার অন্তর সত্ তাই আমি সত্ বাক্যই বলবো| আমি যা জানি সে বিষয়ে আমি সত্যই বলবো| 4 ঈশ্বরের আত্মা আমায় সৃষ্টি করেছে| ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের নিঃশ্বাস আমাকে জীবন দিয়েছে| 5 ইয়োব, আমার কথা শুনুন এবং যদি পারেন আমার প্রশ্নর উত্তর দিন| আপনার উত্তর তৈরী করে রাখুন যাতে আপনি তর্ক করতে পারেন| 6 ঈশ্বরের সামনে আপনি এবং আমি উভয়েই সমান| আমাদের দুজনকে ঈশ্বর মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন| 7 ইয়োব, আমাকে ভয় পাবেন না| আমি আপনার প্রতি কঠোর হব না| 8 “কিন্তু ইয়োব, আমি শুনেছি, আপনি কি বলেছেন, 9 আপনি বলেছেন: ‘আমি শুচিশুদ্ধ| আমি নিষ্পাপ| আমি কোন ভুল করি নি| আমি অপরাধী নই! 10 আমি কোন ভুল করি নি, কিন্তু ঈশ্বর আমার বিরুদ্ধে| ঈশ্বর আমার সঙ্গে শএুর মত ব্যবহার করেছেন| 11 ঈশ্বর আমার পায়ে শিকল পরিযেছেন| আমার সব পথগুলি ঈশ্বর লক্ষ্য করেন|’ 12 “কিন্তু ইয়োব, এ ক্ষেত্রে আপনি ভুল করেছেন| আমি প্রমাণ করবো য়ে আপনি ভুল করেছেন| কেন? কারণ, য়ে কোন লোকের চেয়ে ঈশ্বর মহান| 13 আপনি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কেন অভিয়োগ আনেন? কেন আপনি দাবী করেন, “ঈশ্বর কোন লোকের অভিয়োগের উত্তর দেন না? আপনি ভেবেছেন ঈশ্বর সব কিছুই আপনার কাছে ব্যাখ্যা করে দেবেন? 14 হতে পারে ঈশ্বর যা করেন তিনি তার ব্যাখ্যা দেন| কিন্তু ঈশ্বর য়ে ভাবে কথা বলেন লোকে তা বোঝে না| 15 রাত্রে যখন লোকরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ঈশ্বর হয়তো তখন স্বপ্নে কথা বলেন| তখন তারা ভীষণ ভয় পায়| তখন তারা ঈশ্বরের সাবধান বাণী শোনে| 16 17 ভুল কাজ করার থেকে বিরত হতে ঈশ্বর তাদের সতর্ক করে দেন এবং তাদের অহঙ্কারী হওয়া থেকে বিরত রাখেন| 18 মৃত্যুলোক থেকে উদ্ধার করবার জন্য ঈশ্বর মানুষকে সতর্ক করে দেন| ধ্বংসোন্মুখ লোকদের পরিত্রাণ করার জন্য ঈশ্বর তা করেন| 19 ঈশ্বর হয়ত এক জন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দিয়ে শুধরে দেন, তাদের হাড়েও এমাগত ব্যথা হতে পারে| 20 তখন সে লোকটি খেতে পারে না, সেই লোকটির এত যন্ত্রণা থাকে য়ে সে সব চেয়ে ভালো খাবারকেও ঘৃণা করে| 21 ঐ লোকটির গায়ের মাংস আর দেখা যায় না| ঐ লোকটির হাড়গুলো বেরিয়ে পড়ে| 22 ঐ লোকটি “গহবর” এর কাছাকাছি পৌঁছে যায়| ওর জীবনও মৃত্যুর কাছাকাছি চলে আসে| 23 ঈশ্বরের হাজার হাজার দেবদূত আছে| হয়তো তাদের এক জন দূত ঐ লোকের ওপর নজর রাখছে| সেই দূত হয়তো ঐ লোকটার জন্যই বলে এবং সে যা ভালো কাজ করেছে সে সম্পর্কেই বলে| 24 হয়তো ঐ দূত ঐ লোকটির প্রতি সদয হয়ে ঈশ্বরকে বলবে: ‘এই লোকটাকে গহবর থেকে উদ্ধার করে দিন! আমি ওর জীবনের জন্য একটি মুক্তিপন পেয়েছি|’ 25 তখন ঐ লোকটির দেহ আবার তারুণ্যে ভরে উঠবে| যুবকাবস্থায তার দেহ য়েমন ছিল, ঠিক সে রকম হয়ে যাবে| 26 ঐ লোকটি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবে এবং ঈশ্বর ওর প্রার্থনার উত্তর দেবেন| ঐ লোকটি আনন্দে চিত্কার করবে এবং ঈশ্বরের পূজো করবে| তার সত্জীবনের জন্য ঈশ্বর তাকে পুরস্কৃত করবেন| ও আবার সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করবে| 27 ঐ ব্যক্তিটি লোকদের কাছে তার দোষ স্বীকার করবে| সে বলবে, ‘আমি পাপ করেছিলাম| আমি ভালোকে মন্দে পরিণত করেছিলাম| কিন্তু আমার য়ে শাস্তি প্রাপ্য ছিল, সে কঠিন শাস্তি ঈশ্বর আমাকে দেন নি! 28 আমার আত্মাকে ঈশ্বর পাতালের মধ্যে পতন থেকে রক্ষা করেছেন| আমি এখন আবার জীবনকে উপভোগ করতে পারি|’ 29 “ঐ লোকটার জন্য ঈশ্বর বার বার এই সব করেছেন| 30 কেন? ঐ লোকটিকে গহবর থেকে উদ্ধার করবার জন্য, যাতে ঐ লোকটি আবার তার জীবনকে উপভোগ করতে পারে| 31 “ইয়োব, আমার দিকে মনোয়োগ দিন| আমার কথা শুনুন| চুপ করুন এবং আমাকে কথা বলতে দিন| 32 কিন্তু ইয়োব, আপনি যদি আমার সঙ্গে একমত না হন তাহলে আপনি কথা বলে যান| আমাকে আপনার যুক্তিগুলি বলুন কারণ আমি দেখাতে উদ্গ্রীব য়ে আপনি নির্দোষ| 33 কিন্তু ইয়োব, যদি আপনার কিছু বলবার না থাকে, তাহলে আমার কথা শুনুন| চুপ করে থাকুন, আমি আপনাকে প্রজ্ঞা বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে দেবো|”
1 তখন ইলীহূ কথা বলে য়েতে লাগলো| সে বলল: 2 “হে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি, আমি যা বলি তা শুনুন| হে বুদ্ধিমান ব্যক্তিগন, আমার প্রতি মনোয়োগ দিন| 3 কারণ জিভ য়েমন খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ করে তেমনি কান কথাকে পরীক্ষা করে| 4 অতএব, আমাদেরই ঠিক করতে দিন কোনটা সঠিক| আসুন, আমরা সবাই মিলে স্থির করি কোনটা সত্যিই ভালো|” 5 ইয়োব বললেন, ‘আমি নিষ্পাপ| ঈশ্বর আমার প্রতি সুবিচার করেন নি| 6 আমি নিষ্পাপ, কিন্তু আমার বিরুদ্ধে গৃহীত বিচার বলছে আমি একজন মিথ্যাবাদী| আমি নিষ্পাপ, কিন্তু আমি খুব বিশ্রী ভাবে আহত হয়েছি|’ 7 “ইয়োবের মত আর কোন লোক আছে কি? ঈশ্বরকে অভিযুক্ত করা তাঁর কাছে জলের মত সোজা| 8 এমনকি শএুদের সঙ্গেও ইয়োব বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করেন| ইয়োব মন্দ লোকদের সঙ্গে থাকতে ভালোবাসেন| 9 কেন আমি একথা বলছি? কেন না ইয়োব বলেন, ‘যদি কেউ ঈশ্বরকে খুশী করতে চায় সে লোক কিছুই পাবে না|’ 10 “আপনারা বুঝতে পারেন| তাই আমার কথা শুনুন| ঈশ্বর কখনই মন্দ কাজ করবেন না| ঈশ্বর সর্বশক্তিমান কখনও ভুল করবেন না| 11 য়ে যা করে তার জন্য ঈশ্বর তাকে পুরস্কৃত করেন| ঈশ্বর মানুষকে তার প্রাপ্য মিটিয়ে দেন| 12 এটা সম্পূর্ণরূপে সত্য: ঈশ্বর মন্দ কাজ করেন না| যা সঠিক তাকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কখনো মুচড়ে বিকৃত করবেন না| 13 কোন মানুষ ঈশ্বরকে পৃথিবীর দায়িত্ব দিয়ে নির্বাচন করেনি| কেউই ঈশ্বরকে পৃথিবীর দায়িত্ব দেয় নি| তিনিই সব কিছুর সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন| 14 ঈশ্বর যদি মনস্থ করেন য়ে তিনি তাঁর আত্মাকে এবং তাঁর নিঃশ্বাসকে পৃথিবী থেকে নিয়ে নেবেন, 15 তাহলে পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রাণী মারা পড়বে এবং মনুষ্য জাতি পরিণত হবে ধূলায| 16 “আপনারা যদি জ্ঞানবান হন তাহলে আমি যা বলি তা শুনুন| 17 ঈশ্বর কি করে ন্যায় ও নিয়মকে ঘৃণা করতে পারেন? তাহলে আপনি কি করে ধার্মিক ও শক্তিশালী ঈশ্বরকে ভুল বলে অভিযুক্ত করতে পারেন? 18 ঈশ্বরই একমাত্র সত্তা যিনি রাজাকে বলেন, ‘তুমি অপদার্থ!’ ঈশ্বর নেতৃতৃর্গকে বলেন, ‘তোমরা মন্দ লোক!’ 19 ঈশ্বর অন্যান্য লোকদের চেয়ে নেতাদের বেশী ভালোবাসেন না| ঈশ্বর দরিদ্র লোকদের চেয়ে ধনীদের বেশী ভালোবাসেন না| কেন? কারণ ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন| 20 মধ্যরাত্রে লোকে হঠাত্ মারা য়েতে পারে| অসুস্থ হয়ে লোকে মারা য়েতে পারে| বিনা কোন আযাসে ঈশ্বর ক্ষমতাবান লোককে সরিয়ে দেন| 21 “লোকরা কি করে ঈশ্বর তা লক্ষ্য করেন| ঈশ্বর এক জন লোকের প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে জানেন| 22 ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকবার জন্য মন্দ লোকদের কাছে কোন অন্ধকার স্থান নেই| 23 এক জন লোককে পরীক্ষা করবার জন্য ঈশ্বরের কোন সময় স্থির করবার প্রয়োজন হয় না| একটা লোককে বিচার করবার জন্য লোকটিকে ঈশ্বরের সামনে আনবার দরকার হয় না| 24 কোন বিচার ছাড়াই ঈশ্বর শক্তিশালী লোকদের ধ্বংস করেন এবং অন্যান্য লোকদের নেতা হিসেবে মনোনীত করেন| 25 তাই ঈশ্বর জানেন মানুষ কি করে| সেই জন্য মন্দ লোকদের ঈশ্বর এক রাতের মধ্যেই পরাজিত করে ধ্বংস করেন| 26 মন্দ লোকরা য়ে খারাপ কাজ করেছে তার জন্য ঈশ্বর ওদের শাস্তি দেবেন| ওই লোকগুলোকে ঈশ্বর এমন ভাবে শাস্তি দেবেন যাতে অন্য লোকে তা ঘটতে দেখতে পায়| 27 কেন? কারণ মন্দ লোকরা ঈশ্বরকে মান্য করা বন্ধ করে দিয়েছে| এবং ঈশ্বর যা চান, ওই মন্দ লোকরা তা করার ব্যাপারে কোন তোযাক্কাই করে না| 28 ঐ মন্দ লোকরা দরিদ্রদের আঘাত করে ঈশ্বরের কাছে সাহায্য চাইতে বাধ্য করে| ঈশ্বর সেই সাহায্য চাইবার আর্তি শোনেন| 29 কিন্তু ঈশ্বর যদি মনস্থ করেন ওদের সাহায্য করবেন না, তাহলে কেউই ঈশ্বরকে দোষী বলতে পারে না| ঈশ্বর যদি নিজেকে মানুষের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখেন কোন লোকই তাঁকে খুঁজে পাবে না|এক জন মন্দ ব্যক্তিকে লোকদের ওপর শাসন করবার থেকে ও লোকদের ধ্বংসের পথে এগিয়ে দেবার থেকে দূরে রাখবার জন্য ঈশ্বর মানুষ এবং দেশের ওপর শাসন করেন| 30 31 ইয়োব, আপনার ঈশ্বরকে বলা উচিত্, ‘আমি অপরাধী| আমি আর কোন পাপ করবো না| 32 আমি যা দেখতে পাই না তা আমাকে শেখান| যদি আমি ভুল করে থাকি সে ভুল আমি আর করবো না|’ 33 “ইয়োব, আপনি চান ঈশ্বর আপনাকে পুরস্কার দিন, কিন্তু আপনি নিজেকে পরিবর্তিত করতে চান নি| ইয়োব, এটা আপনার সিদ্ধান্ত, আমার নয়| আপনি কি ভাবছেন তা আমায় বলুন| 34 এক জন জ্ঞানী লোক আমার কথা শুনবে| এক জন জ্ঞানী লোক বলবে, 35 ‘ইয়োব জানে না সে কি বিষয়ে কথা বলছে| ইয়োব যা বলছে তা অর্থহীন!’ 36 আমি আশা করি ইয়োবকে সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষা করা হবে| কেন? কারণ ইয়োব আমাদের সেই ভাবেই উত্তর দিয়েছেন, য়ে ভাবে এক জন মন্দ লোক উত্তর দেয়| 37 ইয়োব তাঁর অন্যান্য পাপের সঙ্গে বিদ্রোহ যুক্ত করেছে| ইয়োব আমাদের অপমান করেন এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তাঁর অভিয়োগ বাড়ান|”
1 ইলীহূ কথা বলে চলল| সে বলল: 2 “ইয়োব, আপনার পক্ষে একথা বলা ঠিক নয় য়ে, ‘ঈশ্বর অপেক্ষা আমিই অধিকতর সঠিক|’ 3 এবং ইয়োব, আপনি ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘কেউ যদি ঈশ্বরকে খুশী করতে চায় তাহলে সে কি পাবে?’ যদি আমি পাপ না করি তাহলেই বা আমার কি ভাল হবে?’ 4 “ইয়োব, আমি আপনাকে এবং আপনার সঙ্গে আপনার য়ে বন্ধুরা রযেছে তাঁদের উত্তর দিতে চাই| 5 ইয়োব, আকাশের দিকে দেখুন, সেই মেঘের দিকে দেখুন যা আপনার থেকে অনেক অনেক উচেচ| 6 ইয়োব, যদি আপনি পাপ করেন, তা ঈশ্বরকে স্পর্শমাত্র করে না| যদি আপনার অনেক পাপও থাকে তাতেও ঈশ্বরের কিছু এসে যায় না| 7 এবং ইয়োব, যদি আপনি ভালো হন তাতেও ঈশ্বরের কিছু এসে যায় না| ঈশ্বর আপনার কাছ থেকে কিছুই পান না| 8 ইয়োব, য়ে ভাল বা মন্দ কাজ আপনি করেন তা আপনারই মত অন্য লোকদের প্রভাবিত করে মাত্র| তা ঈশ্বরকে সাহায্যও করে না, আঘাতও করে না| 9 “যদি মন্দ লোকরা আহত হয় তারা সাহায্যের জন্য চিত্কার করে| তারা শক্তিশালী লোকের কাছে যায় এবং তাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে| 10 তারা বলবে না, ‘ঈশ্বর কোথায় যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? সেই ঈশ্বর কোথায় যিনি রাত্রে আমাকে সঙ্গীত দেন? 11 ঈশ্বর আমাদের পশুপাখীদের চেয়ে বুদ্ধিমান করেছেন| তাই, কোথায় তিনি?’ 12 বা যদি ঐ মন্দ লোকরা সাহায্যের জন্য ঈশ্বরকে ডাকে, ঈশ্বর ওদের কোন উত্তর দেবেন না| কেন? কারণ ঐ লোকগুলো অহঙ্কারী| ওরা এখনও ভাবে ওরাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ লোক| 13 একথা সত্য য়ে ঈশ্বর ওদের অর্থহীন চাওযায কোন কান দেবেন না| ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ওদের দিকে মনোয়োগই দেবেন না| 14 তাই ইয়োব, আপনি যখন বলেছেন আপনি ঈশ্বরকে দেখেন না, তখন তিনি আপনার কথা শুনবেন না| আপনি বলেছেন য়ে আপনি নিজেকে নিষ্পাপ প্রমাণ করার জন্য, ঈশ্বরের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার সুয়োগের অপেক্ষায রযেছেন| 15 “ইয়োব ভাবেন য়ে ঈশ্বর মন্দ লোকদের শাস্তি দেন না, তিনি মনে করেন ঈশ্বর পাপের দিকে কোন দৃষ্টি দেন না| 16 তাই ইয়োব অর্থহীন কথাবার্তা বলেন| তিনি অনেক কথা বলেন কিন্তু কিছু জানেন না|”
1 ইলীহূ বলে চলল| সে বলল: 2 “আরো কিছুক্ষণ ধৈর্য়্য় ধরুন এবং আমি আপনাকে শিক্ষা দেব| ঈশ্বরের স্বপক্ষে বলবার মত আরো অনেক জিনিষ রযেছে| 3 আমার জ্ঞান আমি সবার সঙ্গে ভাগ করে নেবো| ঈশ্বর আমায় সৃষ্টি করেছেন এবং আমি প্রমাণ করব ঈশ্বর ন্যায়পরাযণ| 4 ইয়োব, আমি সত্যি কথা বলছি| আমি জানি আমি কি বলছি| 5 “ঈশ্বর প্রচণ্ড শক্তিমান, কিন্তু তিনি মানুষকে ঘৃণা করেন না| ঈশ্বর প্রচণ্ড শক্তিমান কিন্তু তিনি ভীষণ রকমের জ্ঞানীও বটে| 6 ঈশ্বর মন্দ লোকদের বাঁচতে দেবেন না| ঈশ্বর গরীব লোকদের সঙ্গে সর্বদাই ভালো ব্যবহার করেন| 7 যারা সত্পথে জীবনযাপন করে ঈশ্বর তাদের ওপর নজর রাখেন| তিনি সত্ লোকদেরই শাসক হতে দেন| সত্ লোকদেরই ঈশ্বর চির দিনের জন্য সম্মান দেন| 8 তাই যদি মানুষকে শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে এবং যদি তাদের শিকল ও দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়ে থাকে, তাহলে তারা নিশ্চয় কিছু ভুল কাজ করেছে| 9 তারা কি করেছিলো তা ঈশ্বর ওদের বলবেন| ওরা কি পাপ করেছিলো তা ঈশ্বর ওদের বলবেন| ঈশ্বর ওদের বলবেন য়ে ওরা ভীষণ অহঙ্কারী ছিলো| 10 ঈশ্বর ওই লোকগুলিকে তাঁর সতর্কবাণী শুনতে বাধ্য করবেন| তিনি ওদের পাপ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেবেন| 11 যদি তারা ঈশ্বরের কথা শোনে এবং তাঁকে মান্য করে, তাহলে তারা তাদের জীবনের বাকী দিনগুলো সুখে ও সমৃদ্ধিতে যাপন করবে| 12 কিন্তু এই লোকগুলো যদি ঈশ্বরকে মানতে অস্বীকার করে তাহলে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে| তাদের নির্বোধের মত মৃত্যু হবে| 13 য়ে লোকরা ঈশ্বরের তোযাক্কা করে না তারা সর্বদাই তিক্ত স্বভাবের হয়| এমনকি ঈশ্বর যখন ওদের শাস্তি দেন তখনও ওরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে চায় না| 14 ঐ লোকগুলো পুরুষ দেহ-জীবীর মত অল্প বয়সেই মারা যাবে| 15 কিন্তু বিনীত লোকদের ঈশ্বর সংকট থেকে উদ্ধার করবেন| মানুষ জেগে উঠবে এবং ঈশ্বরের কথা শুনবে বলে ঈশ্বর মানুষকে সমস্যা দেন| 16 “ইয়োব, ঈশ্বর আপনাকে সাহায্য করতে চান| ঈশ্বর আপনাকে সমস্যা থেকে মুক্ত করতে চান| আপনার জীবনকে ঈশ্বর আরও সাবলীল করতে চান| ঈশ্বর আপনার সামনে প্রচুর খাদ্য দিতে চান| 17 কিন্তু ইয়োব, আপনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন| তাই এক জন মন্দ লোকের মত আপনি শাস্তি পেয়েছিলেন| 18 ইয়োব, সম্পদের দ্বারা আপনি নির্বোধ হয়ে যাবেন না| অর্থ য়েন আপনার মনের পরিবর্তন না করে| 19 আপনার অর্থ এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না| এবং শক্তিশালী লোকরাও এখন কোন ভাবে সাহায্য করতে পারবে না! 20 রাত্রির আগমনের প্রত্যাশা করবেন না| লোকে অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে য়েতে চায়| তারা ভাবে তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকবে| 21 ইয়োব, আপনি প্রচুর কষ্টভোগ করেছেন| কিন্তু মন্দকে পছন্দ করবেন না| ভুল করবেন না, সতর্ক থাকবেন| 22 “দেখুন, ঈশ্বরের শক্তি তাঁকে মহান করেছে| ঈশ্বর প্রত্যেকেরই মহানতম শিক্ষক| 23 কি করতে হবে তা কোন লোকই ঈশ্বরকে বলতে পারে না| কোন লোকই ঈশ্বরকে বলতে পারে না, ‘আপনি ভুল করেছেন|’ 24 “ঈশ্বর যা করেছেন তার জন্য তাঁকে প্রশংসা করার কথা মনে রাখবেন| ঈশ্বরের প্রশংসা করে লোকে অনেক গান লিখেছে| 25 ঈশ্বর কি করেছেন তা প্রত্যেকেই দেখতে পায়| কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের কাজ শুধু মাত্র দূর থেকে দেখে| 26 হ্যাঁ, আমাদের কল্পনার চেয়েও ঈশ্বর মহান| ঈশ্বর কতদিন ধরে বেঁচে আছেন, আমরা জানি না| 27 “ঈশ্বর পৃথিবী থেকে জল নিয়ে তাকে বৃষ্টিতে পরিণত করেন| 28 তাই মেঘ জল দেয় এবং বহু লোকের ওপর বৃষ্টি পড়ে| 29 কেমন করে ঈশ্বর মেঘকে ছড়িয়ে দেন, কেমন করে আকাশে বজ্র খেলে যায় তা কেউই জানে না, বুঝতে পারে না| 30 দেখুন, ঈশ্বর তাঁর বিদ্যুত্কে আকাশে পাঠিয়েছেন এবং সমুদ্রের গভীরতম অংশকে আবৃত করে দিয়েছেন| 31 জাতিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এবং তাদের প্রচুর খাবার দেওয়ার জন্য ঈশ্বর ওগুলিকে ব্যবহার করেন| 32 ঈশ্বর তাঁর হাতে বিদ্যুত্কে ধরে থাকেন এবং যেখানে তিনি চান, সেখানেই বিদ্যুত্কে আছড়ে ফেলেন| 33 বজ্রপাত মানুষকে সতর্ক করে দেয় য়ে ঝড় আসছে| তাই গবাদি পশুরাও জানতে পারে ঝড় আসছে|
1 “ওই বজ্রপাত এবং বিদ্যুত্ আমাকে ভীত করে, বুকের ভেতর আমার হৃত্পিণ্ড ধুকপুক করতে থাকে| 2 প্রত্যেকে শুনুন! ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর বজ্রের মত শোনায| ঈশ্বরের মুখ থেকে য়ে বজ্রময ধ্বনি নির্গত হয়, তা শুনুন| 3 আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্য়ন্ত ঝলকে ওঠার জন্য ঈশ্বর বিদ্যুত্ প্রেরণ করেন| সারা পৃথিবী জুড়ে তা চমক দিয়ে ওঠে| 4 বিদ্যুত্ ঝলকের ঠিক পরেই ঈশ্বরের গর্জন-রুদ্ধ কণ্ঠস্বর শোনা যায়| ঈশ্বরের মহত্ব ও মহিমাপূর্ণ স্বর বজ্রের গুরুগুরু শব্দে প্রকাশ পায়| যখন বিদ্যুত্ ঝলকে ওঠে তখনই বজ্রের ভেতর ঈশ্বরের কণ্ঠ শোনা যায়| 5 ঈশ্বরের বজ্রময কণ্ঠ অসম্ভব সুন্দর| তাঁর মহত্ কার্য়্য়কলাপ আমরা বুঝতে পারি না| 6 ঈশ্বর তুষারকে বলেন, ‘পৃথিবীতে পতিত হও|’ ঈশ্বর বৃষ্টিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে ঝরে পড়|’ 7 ঈশ্বর তা করেন যাতে প্রত্যেকটি লোক যাদের তিনি সৃষ্টি করেছেন তারা জানতে পারে য়ে, তিনি (ঈশ্বর) কি করতে পারেন| এটাই তার প্রমাণ| 8 পশুরা তাদের গুহাতে ছুটে চলে যায় এবং সেখানে থাকে| 9 দক্ষিণ থেকে ঝোড়ো বাতাস ছুটে আসে| উত্তরদিক থেকে ঠাণ্ডা বাতাস আসে| 10 ঈশ্বরের নিঃশ্বাস থেকে বরফ সৃষ্টি হয় এবং জলের বিশাল আধার জমে যায়| 11 ঈশ্বর মেঘকে জলে পূর্ণ করেন এবং মেঘের ভেতর থেকে বিদ্যুত্ পাঠান| 12 মেঘগুলো ঘুরে যায় এবং ঈশ্বরের আদেশ মত নড়াচড়া করে| মেঘগুলোও ঈশ্বর যা আদেশ দেন সেই মত করে| 13 ঈশ্বর মেঘকে নিয়ে আসেন বন্যা এনে মানুষকে শাস্তি দেওয়ার জন্য অথবা, জল এনে তাঁর প্রেম প্রদর্শনের জন্য| 14 “ইয়োব, এটা শুনুন| ঈশ্বর য়ে সব বিস্মযকর কাজ করেন সে বিষয়ে চিন্তা করুন| 15 ইয়োব, আপনি কি জানেন কেমন করে ঈশ্বর মেঘকে নিয়ন্ত্রণ করেন? আপনি কি জানেন কেমন করে ঈশ্বর তাঁর বিদ্যুত্ ঝলক সৃষ্টি করেন? 16 আপনি কি জানেন কেমন করে মেঘ আকাশে ভেসে থাকে? আপনি কি সেই “একজনের” বিস্মযকর কাজগুলো জানেন য়াঁর জ্ঞান নিখুঁত? 17 কিন্তু ইয়োব, আপনি এসবের কিছু জানেন না| আপনি যা জানেন তা হল এই য়ে আপনি ঘামেন, আপনার জামাকাপড় আপনার গায়ে জড়িয়ে থাকে এবং যখন দক্ষিণ থেকে উষ্ণ বাতাস আসে তখন সব কিছু স্থির ও শান্ত থাকে| 18 ইয়োব, আপনি কি মেঘকে প্রসারিত করে ঈশ্বরকে সাহায্য করতে পারেন? মেঘকে উজ্জ্বল পিতলের মত ঝকঝকে তৈরী করেন? 19 “ইয়োব, বলুন আমরা ঈশ্বরকে কি বলবো? আমাদের অজ্ঞতাবশতঃ সেটা চিন্তা করতে পারি না| কি বলতে হবে? 20 আমি ঈশ্বরকে বলবো না য়ে আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম| তা ধ্বংসকে আবাহন করার সামিল হবে| 21 এক জন লোক সূর্য়ের দিকে তাকাতে পারে না| বাতাস মেঘকে উড়িযে নিয়ে যাওয়ার পর সূর্য় আকাশে অত্যন্ত উজ্জ্বল ও কিরণময হয়ে ওঠে| 22 ঈশ্বরও সেই রকম! পবিত্র পর্বতথেকে ঈশ্বরের স্বণার্ভ মহিমা বিকীর্ণ হয়| ঈশ্বরের চারদিকে উজ্জ্বল আলো আছে| 23 ঈশ্বর সর্বশক্তিমান অত্যন্ত মহান| আমরা ঈশ্বরকে বুঝতে পারি না| ঈশ্বর অত্যন্ত শক্তিমান, সেই সঙ্গে তিনি আমাদের প্রতি সদয ও নিষ্ঠাবান| ঈশ্বর আমাদের আঘাত করতে চান না| 24 সেই জন্যই লোকে ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে| কিন্তু যারা নিজেদের জ্ঞানী মনে করে ঈশ্বর সেই অহঙ্কারীদের প্রতি মনোয়োগ দেন না|”
1 তখন প্রভু ঝোড়ো বাতাসের মধ্যে থেকে কথা বলে উঠলেন| প্রভু বললেন: 2 “কে এই অজ্ঞ লোক য়ে বোকার মত কথা বলছে?” 3 ইয়োব, নিজেকে প্রস্তুত করে নাও, সৈনিকের মত অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নাও| এবং আমি য়ে প্রশ্ন করবো তার উত্তর দেবার জন্য তৈরী হও| 4 “ইয়োব, আমি যখন পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলাম তখন তুমি কোথায় ছিলে? যদি তুমি প্রকৃতই জ্ঞানী হও তাহলে আমাকে উত্তর দাও| 5 যদি তুমি এতই জ্ঞানী হও তো বল এই পৃথিবীটা কত বড় হবে তা কে স্থির করেছিল? পরিমাপক রেখা দিয়ে কে পৃথিবীটার পরিমাপ করেছে? 6 পৃথিবীর ভিত্তি স্তম্ভগুলি কিসের ওপর বসে রযেছে? তার জায়গায় কে প্রথম নির্মান-প্রস্তর রেখেছে? 7 যখন তা সৃষ্টি করা হয়েছিল তখন প্রভাতের তারাসমূহ এক সঙ্গে গান গেযেছিল| দেবদূতরা আনন্দে হর্ষধ্বনি করেছিল| 8 “ইয়োব, পৃথিবীর গভীর থেকে যখন সমুদ্র প্রবাহিত হতে শুরু করেছিল তখন কে তা বন্ধ করার জন্য দ্বাব রুদ্ধ কষ্ঠরছিল? 9 সেই সময়, নবজাতককে পোশাক পরাবার মত আমি একটি পোশাকের মত মেঘগুলোকে চারদিকে জড়িয়ে দিয়েছিলাম এবং তাকে, একটি শিশুকে য়েমন শক্ত করে কাপড় দিয়ে জড়িয়ে দেওয়া হয় সেই ভাবে অন্ধকার দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলাম| 10 আমি সমুদ্রের সীমা নির্ধারণ করেছিলাম, এবং তাকে বাঁধের অন্যদিকে রেখেছিলাম| 11 আমি সমুদ্রকে বলেছিলাম, ‘তুমি এই পর্য়ন্ত আসতে পার, এর বেশী নয়| এই খানেই তোমার উদ্ধত ঢেউ য়েন থেমে যায়|’ 12 “ইয়োব, তোমার জীবনে তুমি কি কখনও সকাল বা দিনকে শুরু হবার আদেশ দিয়েছ? 13 ইয়োব, তুমি কি সকালের আলোকে কখনও বলেছো: পৃথিবীকে ধারণ কর এবং মন্দ লোকদের তাদের গোপন ড়েবা থেকে তাড়িত কর? 14 প্রভাতের আলো, পাহাড় এবং উপত্যকা সহজেই দেখতে সহায়তা করে| যখন দিনের আলো পৃথিবীতে এসে পড়ে, তখন জামার ভাঁজের মত সেই স্থানের রূপ সহজেই বোঝা যায়| সেই স্থান, শীলমোহর দিয়ে ছাপ মারা নরম কাদার মতই (সমতল) আকৃতি ধারণ করে| 15 মন্দ লোকরা দিনের আলো পছন্দ করে না| দিনের আলো যখন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তখন তা তাদের মন্দ কাজ করা থেকে বিরত করে| 16 “ইয়োব, যেখানে সমুদ্র শুরু হয়, সেই গভীরতম সমুদ্রে তুমি কি কখনও গিয়েছো? তুমি কি কখনও সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে হেঁটেছো? 17 ইয়োব, তুমি কি কখনও মৃত্যুলোকের দ্বাব এবং গভীর অন্ধকার দেখেছ? 18 ইয়োব, এই পৃথিবীটা য়ে কত বড় তা কি তুমি সত্যি সত্যিই বোঝ? যদি তুমি এসব বুঝে থাকো, আমায় বল| 19 “ইয়োব, কোথা থেকে আলো আসে? কোথা থেকে অন্ধকার আসে? 20 ইয়োব, য়েখান থেকে আলো ও অন্ধকার আসে, তুমি কি তাদের সেখানে ফিরিযে নিয়ে য়েতে পারবে? তুমি কি জানো সেই জায়গায় কি করে য়েতে হয়? 21 এইগুলো তুমি নিশ্চয় জানো, ইয়োব| কারণ তুমি বয়ঃবৃদ্ধ এবং জ্ঞানী| যখন আমি এসব সৃষ্টি করেছিলাম তখন তুমি জীবিত ছিলে, তাই না? 22 “ইয়োব, য়ে ভাণ্ডারে আমি তুষার এবং শিলাবৃষ্টি সঞ্চয় করে রাখি তুমি কি কখনও সেখানে গিয়েছিলে? 23 সঙ্কট কালের জন্য এবং যুদ্ধবিগ্রহের জন্য আমি শিলাবৃষ্টি ও তুষার সঞ্চয় করে রাখি| 24 তুমি কি কখনও সেই জায়গায় গিয়েছো য়েখান থেকে সূর্য় উদিত হয়, য়েখান থেকে সারা পৃথিবীতে পূবের বাতাস প্রবাহিত হয়? 25 প্রচণ্ড বৃষ্টির জন্য কে আকাশে খাদ খনন করেছে? কে ঝড় বিদ্যুতের জন্য পথ প্রস্তুত করেছে? 26 যেখানে কোন লোকই বসবাস করে না সেখানেও কে বৃষ্টি নিয়ে যায়? 27 সেই বৃষ্টি, শূন্য ভূমিতে প্রচুর জল দেয় এবং ঘাস গজিয়ে ওঠে| 28 এই বৃষ্টির কি কোন জনক আছে? শিশির বিন্দুর পিতা কে? 29 বরফের কি কোন জননী আছে? তুষারকে কে জন্ম দেয়? 30 জল পাথরের মত শক্ত হয়ে জমে যায়| এমনকি সমুদ্রও জমে যায়! 31 “ইয়োব, তুমি কি কৃত্তিকা নক্ষত্রমালাকে এক সঙ্গে বাঁধতে পারো? তুমি কি কালপুরুষের বন্ধনকে মুক্ত করতে পারো? 32 তুমি কি ঠিক সময়ে নক্ষত্রমণ্ডলীকে বার করতে পারো? তুমি কি বিরাট ভালুকটিকে তার শাবকসহ পরিচালিত করতে পারো? 33 য়ে বিধির দ্বারা আকাশ শাসিত হয়, তা কি তুমি জানো? তুমি কি পৃথিবীর ওপর ক্রমানুসারে তাদের সাজাতে পারো? 34 “ইয়োব, তুমি কি বৃষ্টির দিকে চেয়ে, তাদের নির্দেশ দিতে পারো, তোমাকে বৃষ্টিতে ঢেকে দিতে? 35 তুমি কি বিদ্যুতকে আদেশ করতে পারো? তারা কি তোমার কাছে এসে বলবে, ‘আপনি কোথায়? আপনি কি চান প্রভু?’ তুমি যেখানে চাও, তারা কি সেখানে যাবে? 36 ইয়োব, কে মানুষকে জ্ঞানী করে? কে তাদের অন্তরে প্রজ্ঞা দান করে? 37 এমন জ্ঞানী কে আছে য়ে মেঘ গণনা করতে পারে? কে তাদের বৃষ্টি ঝরানোর নির্দেশ দেয়? 38 ধূলো পরিণত হয় কাদায় এবং এক সঙ্গে দলা পাকিয়ে থাকে| 39 “ইয়োব, তুমি সিংহের জন্য খাদ্য খুঁজে দাও? তুমি কি ওদের ক্ষুধার্ত শিশুদের খেতে দাও? 40 এই সিংহরা তাদের গুহায় লুকিয়ে থাকে| শিকার ধরবার জন্য তারা লম্বা ঘাসের মধ্যে লুকিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকে| 41 যখন দাঁড় কাকের ছানারা ঈশ্বরের কাছে সাহায্যের জন্য চিত্কার করে এবং নিরন্ন হয়ে ঘুরতে থাকে, তখন কে দাঁড় কাকদের খেতে দেয়?
1 “ইয়োব, তুমি কি জানো কখন পাহাড়ী ছাগলের জন্ম হয়? কখন হরিণ তার শাবককে জন্ম দেয় তা কি তুমি দেখতে পাও? 2 পাহাড়ী ছাগল ও হরিণ কতদিন ধরে তাদের বাচচাকে ধারণ করে তা কি তুমি জানো? কোনটাই বা তাদের জন্মানোর ঠিক সময় তা কি তুমি জানো? 3 ঐ পশুগুলো শুয়ে পড়ে, প্রসব যন্ত্রণা অনুভব করে এবং ওদের শাবকরা জন্ম নেয়| 4 ঐ শাবকরা মাঠেই বড় হয়| ওরা ওদের মাকে ছেড়ে চলে যায়, আর ফিরে আসে না| 5 “ইয়োব, বুনো গাধাদের কে মুক্তভাবে বিচরণ করতে দিয়েছে? কে ওদের বাঁধন খুলে ওদের মুক্ত করে দিয়েছে? 6 তাদের ঘর হিসেবে আমি তাদের মরুভূমি দিয়েছি, বসবাসের জন্য আমি ওদের নোনা জমি দিয়েছি| 7 শহরের কোলাহলে ওরা (বিদ্রূপে) হাসে| কেউই ওদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না| 8 বুনো গাধারা পাহাড়ে বাস করে| ওটাই ওদের চারণভূমি| ওই খানেই ওরা ওদের খাদ্য খোঁজে| 9 “ইয়োব, একটি বুনো বলদ কি তোমার কাজ করবে? সে কি রাত্রি বেলা তোমার শস্যাগারে থাকবে? 10 তুমি জমি চাষ করবে বলে একটি বুনো বলদ কি তোমাকে তার গলায দড়ি পরাতে দেবে? 11 একটি বন্য বলদ খুবই শক্তিশালী! কিন্তু সে তোমার কাজ করে দেবে এমন বিশ্বাস কি করতে পারো? 12 তুমি কি তার ওপর এমন নির্ভর করতে পারো য়ে সে শস্য মাড়বার খামারে তোমার জন্য শস্য এনে জড়ো করবে? 13 “একটি উটপাখী উত্তেজিত হয়ে ডানা ঝাপটায কিন্তু উটপাখী উড়তে পারে না| এর ডানা ও পালক বকের ডানা ও পালকের মত নয়| 14 উটপাখী তার ডিম মাটিতে পরিত্যাগ করে যায় এবং সেটা বালিতে উষ্ণ হয়ে ওঠে| 15 উটপাখী ভুলে যায় য়ে কেউ তার ডিম মাড়িয়ে দিতে পারে, অথবা কোন পশু তার ডিম ভেঙে দিতে পারে| 16 উটপাখী তার ছোটছোট বাচচাগুলিকে ছেড়ে চলে যায়| উটপাখী এমন আচরণ করে য়েন বাচচাগুলি তার নয়| সে এটা ভাবে না য়ে বাচচাগুলি যদি মারা যায়, তার সমস্ত পরিশ্রমই অর্থহীন হয়ে যাবে| 17 কেন? কারণ আমি (ঈশ্বর) উটপাখীকে কোন প্রজ্ঞা দান করি নি| উটপাখী নির্বোধ, আমি তাকে ওভাবেই সৃষ্টি করেছি| 18 কিন্তু উটপাখী যখন দৌড়ানোর জন্য ওঠে তখন সে ঘোড়া ও সওয়ারীকেও লজ্জা দেয় কারণ য়ে কোন ঘোড়ার থেকে সে দ্রুত ছুটতে পারে| 19 “ইয়োব, তুমি কি ঘোড়াকে তার শক্তি দিয়েছো? তুমি কি ঘোড়ার ঘাড়ের কেশর সৃষ্টি করেছো? 20 তুমি কি ঘোড়াকে পঙ্গপালের মত দীর্ঘ লাফ দেওয়ার যোগ্য করে তুলেছো? ঘোড়া জোরে হ্রেষাধ্বনি করে এবং লোকদের সতর্ক করে দেয়| 21 ঘোড়া খুবই খুশী কারণ সে শক্তিশালী| সে তার খুর দিয়ে মাটি আঁচড়ায এবং দ্রুত যুদ্ধক্ষেত্রে ছুটে যায়| 22 ঘোড়া ভয়কে উপহাস করে| সে ভীত হতে জানে না! সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায় না| 23 ঘোড়ার ওপর সৈনিকের তূণ (যাতে তীর রাখা হয়), তরবারি, বল্লম এবং বর্শা ঝোলে| 24 ঘোড়া খুব উত্তেজিত হয়| সে অত্যন্ত দ্রুত ছোটে| ঘোড়া যখন শিঙার বাজনা শোনে তখন সে আর স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারে না| 25 যখন শিঙার শব্দ হয় তখন ঘোড়া বলে ‘তাড়াতাড়ি কর!’ বহু দূর থেকে সে লড়াই এর গন্ধ পায়| সে সেনাপতিদের চিত্কার এবং শিঙার রন ভেরী শুনতে পায়| 26 “ইয়োব, তুমি কি বাজপাখীকে ডানা মেলে দক্ষিণে উড়ে য়েতে শিখিয়েছ? 27 তুমি কি সেই জন য়ে ঈগলপাখীকে উঁচু আকাশে উড়তে বলেছো? তুমিই কি ঈগলপাখীকে উঁচু পাহাড়ে বাসা বাঁধতে বলেছো? 28 ঈগলপাখী উঁচু পাহাড়ে বাস করে| উঁচু দূরারোহ পাহাড়ের ধার হল ঈগলপাখীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল| 29 পাহাড়ের সেই উঁচু স্থান থেকে সে খাদ্যের সন্ধান করে| বহুদূর থেকে সে তার খাদ্য দেখতে পায়| 30 যেখানে মৃতদেহ জমা করা হয় তারা সেখানে জড় হয়| তাদের ছানারা রক্ত পান করে|”
1 প্রভু ইয়োবকে উত্তর দিলেন এবং বললেন: 2 “ইয়োব, তুমি ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের সঙ্গে তর্ক করেছো| তুমি কি আমাকে সংশোধন করবে? য়ে ব্যক্তি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তর্ক করে সে তাঁর কাছে উত্তর দেবে!” 3 তখন ইয়োব প্রভুকে উত্তর দিয়ে বললেন: 4 “আমি কথা বলার যোগ্য নই; আমি আপনাকে কি বা বলতে পারি? আমার মুখ হাত দিয়ে চাপা দিলাম| 5 আমার যা বলা উচিত্ ছিল আমি ইতিমধ্যেই তার চেয়ে অনেক বেশী বলে ফেলেছি| আমি আর কিছু বলব না|” 6 তখন ঝড়ের ভেতর থেকে প্রভু আবার কথা বললেন| তিনি বললেন: 7 “ইয়োব, নিজেকে প্রস্তুত কর এবং আমি য়ে প্রশ্ন করবো তার উত্তর দেওয়ার জন্য তৈরী হও| 8 “ইয়োব, তুমি কি এখনও আমার সিদ্ধান্ত নাকচ করবার চেষ্টা করবে? তুমি নিজের সততা প্রতি পালন করবার জন্য আমাকে মন্দ কাজের দরুণ দোষী বলে ঘোষণা করেছ| 9 তোমার বাহু কি ঈশ্বরের বাহুর মতো শক্তিশালী? তোমার কি ঈশ্বরের মত বজ্রগম্ভীর কণ্ঠস্বর আছে? 10 যদি তুমি ঈশ্বরের মত হও তুমি গর্ব করতে পারো| যদি তুমি ঈশ্বরের মত হও তবে মহিমা এবং সম্মান তোমাকে বস্ত্রের মত জড়িয়ে থাকবে| 11 যদি তুমি ঈশ্বরের মত হও তুমি ক্রোধ প্রদর্শন করে অহঙ্কারী লোকেদের শাস্তি দিতে পারো| ওই অহঙ্কারীদের নম্র করে তুলতে পারো| 12 হ্যাঁ, ইয়োব, ওই অহঙ্কারী লোকদের দেখ এবং ওদের নম্র করে তোল| মন্দ লোকরা যেখানে দাঁড়ায়, ওদের গুঁড়িযে দাও| 13 সব অহঙ্কারী লোকদের কবর দাও| ওদের দেহ আবৃত করে ওদের কবরে পাঠিয়ে দাও| 14 ইয়োব, যদি তুমি এই সব করতে পারো, তাহলে আমিও তোমার প্রশংসা করবো| এই আমি স্বীকার করবো য়ে তোমার নিজের শক্তিতেই তুমি নিজেকে রক্ষা করতে পারবে| 15 “ইয়োব, বহেমোতেরদিকে দেখ| আমি বহেমোত্ এবং তোমাকে সৃষ্টি করেছি| বহেমোত্ গরুর মত ঘাস খায়| 16 বহেমোতের গায়ে প্রচুর শক্তি আছে| ওর পাকস্থলীর পেশীগুলি প্রচণ্ড শক্তিশালী| 17 বহেমোতের লেজ এরস গাছের মতই শক্ত| ওর পায়ের পেশীগুলিও খুব শক্ত| 18 ওদের হাড়গুলো কাঁসার মতই শক্ত| ওর হাত পাগুলো লোহার দণ্ডের মত| 19 বিস্ময় সৃষ্টিকারী প্রাণীদের মধ্যে আমি বহেমোতকে সৃষ্টি করেছি| কিন্তু আমি তাকে পরাজিতও করতে পারি| 20 পাহাড়ে যেখানে বন্য পশুরা খেলা করে, সেখানে য়ে ঘাস জন্মায়, বহেমোত্ তা খায়| 21 সে পদ্ম বনের নীচে ঘুমিয়ে থাকে| জলাভূমির নলখাগড়ার ভিতর সে নিজেকে লুকিয়ে রাখে| 22 ঘন পাতা যুক্ত গাছ তার ছায়াতে বহেমোতকে লুকিয়ে ফেলে| নদীর ধারে উইলো গাছের নীচে সে থাকে| 23 নদীতে বন্যা এলেও বহেমোত্ পালিয়ে যায় না| যদি য়?র্ন নদী ওর মুখে উচ্ছ্বাসিত হয়ে ভেঙ্গে পড়ে, তবু বহেমোত্ তাতে ভয় পায় না| 24 ওর চোখকে কেউ অন্ধ করতে পারে না বা ফাঁদ পেতে ওকে ধরতেও পারে না|
1 “ইয়োব, তুমি কি দানবাকৃতি সামুদ্রিক প্রাণী লিবিয়াথনকে মাছ ধরার বঁড়শি দিয়ে ধরতে পারো? একটা দড়ি দিয়ে ওর জিভকে কি বাঁধতে পারো? 2 তুমি কি ওর নাকে দড়ি দিতে পারো অথবা ওর চোযালে বঁড়শি বিঁধিয়ে দিয়ে পারো? 3 লিবিয়াথন কি তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য তোমার কাছে আকুতি জানাবে? সে কি ভদ্র ভাষায় তোমার সঙ্গে কথা বলবে? 4 চির দিন তোমার সেবা করার জন্য লিবিয়াথন কি তোমার সঙ্গে কোন চুক্তি করবে? 5 য়েমন করে তুমি একটি পাখির সঙ্গে খেলা কর, তেমন করে কি তুমি লিবিয়াথনের সঙ্গে খেলা করবে? তুমি কি তাকে দড়িতে বাঁধতে পারবে যাতে তোমার ছোট মেয়েরা ওর সঙ্গে খেলা করতে পারে? 6 ব্যবসাদাররা কি তোমার কাছ থেকে লিবিয়াথনকে কেনার চেষ্টা করবে? ওরা কি তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে সওদাগরের কাছে বিক্রি করতে পারবে? 7 তুমি কি লিবিয়াথনের চামড়ায বা মাথায় মাছ ধরবার বর্শা বা হারপূন বেঁধাতে পারো? 8 “ইয়োব, যদি তুমি একবার লিবিয়াথনের গায়ে হাত দাও তুমি আর কখনো সে কাজ করবে না! সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের কথাটা একবার ভাবো তো! 9 তুমি কি মনে কর তুমি লিবিয়াথনকে পরাজিত করতে পারবে? সে কথা ভুলে যাও| তার কোন আশাই নেই| ওর দিকে তাকালেই তুমি ভয়ে শিউরে উঠবে! 10 তাকে জাগিয়ে দিয়ে রাগিয়ে দেবার সাহস কারো নেই| “তাই, কে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সাহস করবে? 11 আমাকে কারো কাছ থেকে কিছুই কিনতে হয়নি| ওগুলো সব আমারই অধিকারভুক্ত| 12 “ইয়োব, আমি তোমাকে লিবিয়াথনের পা, তার শক্তি এবং তার চেহারার কথা বলবো| 13 কেউই তার চামড়ার দাম দিতে পারে না| ওর চামড়া বর্মের মত শক্ত| 14 কোন লোকই জোর করে লিবিয়াথনের মুখ খোলাতে পারে না| ওর মুখের দাঁত দেখলে লোকে ভয় পায়| 15 ওর পিঠের পেশী সারিবদ্ধ ভাবে দৃঢ়সংবদ্ধ হয়ে আছে| 16 বর্মগুলি এত কাছাকাছি বসানো য়ে ওগুলোর মধ্যে বাতাসও বইতে পারে না| 17 বর্মগুলি একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত| বর্মগুলি এতই ঘন, সংবদ্ধ য়ে ওদের টেনে আলাদা করা যায় না| 18 লিবিয়াথন যখন হাঁচি দেয় তখন আলো ঝলক দিয়ে ওঠে| ওর চোখ প্রত্যুষের আলোর মত জ্বলতে থাকে| 19 ওর মুখ থেকে লেলিহান অগ্নি বেরিয়ে আসে| আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছিটকে আসে| 20 ফুটন্ত কেটলির তলা দিয়ে য়েমন জ্বলন্ত ঘাসের ধোঁয়া বের হয়, লিবিয়াথনের নাক দিয়েও তেমনি ধোঁয়া বার হয়| 21 লিবিয়াথনের নিঃশ্বাসে কযলা জ্বলে যায়, ওর মুখ থেকে আগুনের শিখা বের হয়| 22 লিবিয়াথনের গলা ভীষণ শক্তিশালী, লোকে তাকে ভয় পায় ও ছুটে পালিয়ে যায়| 23 ওর চামড়ার কোন কোমল স্থান নেই| তা য়েন লোহার মত শক্ত| 24 লিবিয়াথনের হৃদয় পাথরের মত| তা য়েন যাঁতা কলের পাথরের মত শক্ত| 25 যখন লিবিয়াথন জেগে ওঠে, দেবতারাও তখন ভয় পান| লিবিয়াথন যখন তার লেজ ঝাপটা দেয়, তখন তাঁরা সন্ত্রস্ত হন| 26 তরবারি, বল্লম বা বর্শা যা দিয়েই লিবিয়াথনকে আঘাত করা হোক না কেন তা প্রতিহত হয়ে ফিরে আসে| ওই সব অস্ত্র তাকে একদম আঘাত করতে পারে না| 27 লোহাকে লিবিয়াথন খড়কুটোর মত গুঁড়িযে দিতে পারে| পচা কাঠের মত সে কাঁসাকে ভেঙে দেয়| 28 তীরের ভয়ে লিবিয়াথন পালিয়ে যায় না| ওর গা থেকে পাথর খড়কুটোর মতো ছিটকে চলে আসে| 29 যদি মুগুর দিয়ে লিবিয়াথনকে আঘাত করা হয়, তা য়েন খড়ের টুকরোর মতো তার গায়ে লাগে| লোকে যখন তার দিকে বল্লম ছোঁড়ে তখন সে হাসে| 30 লিবিয়াথনের পেটের চামড়া ধারালো খোলামকুচির মতো| সে কাদার ওপর দাগ করে দিয়ে যায়, য়েমন তক্তা দিয়ে ফসল মাড়াই করলে দাগ পড়ে- তেমন দাগ| 31 ফুটন্ত জলের মতো লিবিয়াথন জলকে নাড়া দেয়| সে জলের ওপর ফুটন্ত তেলের বুদবুদের মতো বুদবুদ সৃষ্টি করে| 32 যখন লিবিয়াথন সাঁতার দেয় তখন সে তার পেছনে একটি চকচকে পথরেখা রেখে যায়| সে জলকে ঝাঁকিয়ে দিয়ে যায় এবং জলকে ফেনাযিত করে| 33 পৃথিবীর কোন প্রাণীই লিবিয়াথনের মতো নয়| সে ভয়শূন্য প্রাণী| 34 য়ে প্রাণী সব থেকে বেশী গর্ব করে, লিবিয়াথন তাকেও নিচু নজরে দেখে| সে সমস্ত বুনো পশুদের রাজা| এবং আমি (ঈশ্বর) লিবিয়াথন সৃষ্টি করেছি|”
1 তখন ইয়োব প্রভুকে উত্তর দিলেন| ইয়োব বললেন, 2 “প্রভু, আমি জানি আপনি সব কিছু করতে পারেন| আপনি পরিকল্পনা করেন, কোন কিছুই আপনার পরিকল্পনাকে পরিবর্তিত করতে বা রোধ করতে পারে না| 3 প্রভু, আপনি এই প্রশ্ন করেছেন: ‘কে সেই অজ্ঞ লোক য়ে এমন বোকা বোকা কথা বলছে?’ প্রভু, আমি যা বুঝি নি আমি তা বলেছি| আমি সেই সব বিষয়ের কথা বলেছি য়েগুলো বুঝতে গেলে আমি বিস্ময়-বিহবল হয়ে যাই| 4 “প্রভু, আপনি আমায় বলেছেন, ‘শোন ইয়োব, এখন আমি বলবো| আমি তোমাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবো এবং তুমি আমাকে তার উত্তর দেবে|’ 5 প্রভু, অতীতে আমি আপনার সম্বন্ধে শুনেছিলাম, কিন্তু এখন আমার নিজের চোখে আমি আপনাকে দেখলাম| 6 তাই, আমার জন্য আমি লজ্জিত| আমি ছাই ও ধূলার মধ্যে দুঃখের সঙ্গে আমার অপরাধ স্বীকার করছি|” 7 ইয়োবের সঙ্গে কথা শেষ করার পর, প্রভু তৈমন থেকে আসা ইলীফসের সঙ্গে কথা বললেন| প্রভু ইলীফসকে বললেন, “আমি তোমার প্রতি ও তোমার দুই বন্ধুর প্রতি রুদ্ধ হয়েছি| কেন? কারণ তোমরা আমার সম্পর্কে সঠিক কথা বলো নি| কিন্তু ইয়োব আমার সেবক এবং ইয়োব আমার সম্পর্কে সঠিক কথা বলেছে| 8 তাই ইলীফস, এখন তুমি সাতটা বলদ ও সাতটা ভেড়া নাও| আমার সেবক ইয়োবের কাছে তা নিয়ে যাও| ওদের হত্যা কর এবং তোমাদের জন্য হোমবলি হিসেবে উত্সর্গ কর| আমার সেবক ইয়োব তোমাদের জন্য প্রার্থনা করবে এবং আমি তার প্রার্থনার উত্তর দেবো| তাহলে তোমাদের যা শাস্তি প্রাপ্য তা আমি দেব না| তোমাদের শাস্তি পাওয়া উচিত্ কারণ তোমরা ভীষণ নির্বোধ| তোমরা আমার সম্পর্কে সঠিক কথা বলনি| কিন্তু আমার সেবক ইয়োব আমার সম্পর্কে সঠিক কথা বলেছে|” 9 তখন তৈমনীয় ইলীফস, শূহীয় বিল্দদ এবং নামাথীয় সোফর প্রভুর আদেশ পালন করলেন এবং তারপর ইয়োব তাঁদের জন্য য়ে প্রার্থনা করেছিলেন, প্রভু তার উত্তর দিলেন| 10 ইয়োব তাঁর বন্ধুদের জন্য প্রার্থনা করলেন| প্রভু ইয়োবকে আবার সাফল্য দিলেন| ইয়োবের যা ছিলো, ঈশ্বর তাকে তার দ্বিগুণ দিলেন| 11 তখন ইয়োবের সব ভাইবোন এবং অন্য সবাই যারা ইয়োবকে জানতো, তারা তাঁর বাড়ীতে এলো| তারা ইয়োবকে সান্ত্বনা দিলো, প্রভু য়ে ইয়োবকে এত কষ্ট দিয়েছেন তার জন্য তারা দুঃখিত হল| প্রত্যেকে ইয়োবকে এক টুকরো করে রূপোও একটি করে সোনার আংটি দিল| 12 শুরুতে ইয়োবের যা ছিলো, তার থেকে অনেক বেশী সম্পদ দিয়ে প্রভু ইয়োবকে আশীর্বাদ করলেন| ইয়োব 14,000 মেষ, 6,000 উট, 2,000 গাভী এবং 1,000 স্ত্রী গাধা পেলেন| 13 ইয়োব সাত পুত্র এবং তিন কন্যাও পেলেন| 14 ইয়োব প্রথম কন্যার নাম রাখলেনয়িমীমা| দ্বিতীয় কন্যার নাম রাখলেন কত্সীয়া এবং তৃতীয় কন্যার নাম রাখলেন কেরণহপপূক| 15 ইয়োবের কন্যারা সারা দেশের মধ্যে সব চেয়ে সুন্দরী নারী ছিল| ইয়োব তাঁর সম্পত্তির একটি অংশ তাঁর কন্যাদের দিলেন- ওরা ওদের ভাইদের মতোই সম্পত্তির অংশ পেল| 16 তখন ইয়োব, আরও 140 বছর বেশী বেঁচে ছিলেন| তিনি তাঁর সন্তানদের চারটি প্রজন্ম দেখবার জন্য বেঁচে ছিলেন| 17 ইয়োব খুব বৃদ্ধ বয়সে মারা গেলেন|
1 একজন ব্যক্তি প্রকৃত সুখী হবে যদি সে মন্দ লোকের পরামর্শে না চলে, যদি সে পাপীদের মত জীবনযাপন না করে, যদি সে তাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করে - যারা ঈশ্বরকে অশ্রদ্ধা করে| 2 একজন সত্ ব্যক্তি প্রভুর শিক্ষাকে ভালোবাসে| সে প্রভুর শিক্ষা বিষযে দিনরাত চিন্তা করে| 3 এই জন্য সেই ব্যক্তি নদীর ধারে পোঁতা গাছের মত শক্ত ও দৃঢ় হয়| য়ে গাছ ঠিক সময় ফল দেয়, সেই লোক সেই গাছের মত হয়| সেই লোক, সেই গাছের মতই হয়, যার পাতা কোনদিন ঝরে যায় না| সে যা কিছু করে, সবই সফল হয়| 4 মন্দ লোকরা সে রকম নয়| মন্দ লোকরা বাতাসে উড়িযে নিয়ে যাওয়া তুষের মত| 5 সত্ লোকরা যদি একটা বিচারের সিদ্ধান্ত নেবার জন্য একত্রিত হয়, তবে মন্দ লোকরা অপরাধী হিসেবেই প্রমাণিত হবে| সেই পাপীরা, বিচারে সরল নিষ্পাপ বলে প্রমাণিত হবে না| 6 কেন? কারণ প্রভু সত্ লোকদের রক্ষা করেন, কিন্তু মন্দ লোকদের বিনাশ করেন|
1 অন্যান্য জাতিগুলোর লোকজন এত ক্রুদ্ধ কেন? কেন তারা বোকার মত পরিকল্পনা করছে? 2 তাদের রাজারা এবং নেতারা, প্রভু এবং তাঁর মনোনীত রাজার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একত্রিত হচ্ছে| 3 সেই সব নেতা বলছে, “এস আমরা ঈশ্বর এবং তাঁর মনোনীত রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করি| “এস আমরা ওদের থেকে আলাদা হয়ে বেরিয়ে এসে নিজেদের মুক্ত করি!” 4 কিন্তু আমার প্রভু, স্বর্গের রাজা, ওদের প্রতি বিদ্রূপের হাসি হেসেছিলেন| 5 ঈশ্বর ক্রুদ্ধ হয়ে সেই সব লোকদের বলেছেন, “এই ব্যক্তিকে আমি রাজা হিসেবে মনোনীত করেছি! এবং সে সিয়োন পর্বতে রাজত্ব করবে| সিয়োন আমার কাছে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পর্বত|” এই ঘটনা সেই সব নেতাদের ভীত করলো| 6 7 এখন আমি তোমাকে প্রভুর চুক্তির কথা বলবো| প্রভু আমায় বললেন, “আজ আমি তোমার পিতা হলাম! এবং তুমি আমার পুত্র| 8 যদি তুমি আমার কাছে চাও, আমি সমগ্র জাতিগুলি তোমার হাতে দিয়ে দেব! 9 ভেঙ্গে য়েতে পারে না এমন ক্ষমতা নিয়ে তুমি তাদের ওপর শাসন করবে| তুমি তাদের ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাওয়া মাটির পাত্রের মত ছড়িয়ে দেবে|” 10 সুতরাং হে রাজন্যবর্গ জ্ঞানী হও| অতএব হে শাসকগণ, চালাক-চতুর হও| 11 ভয় ও শ্রদ্ধা সহকারে প্রভুর সেবা কর| 12 ঈশ্বরের পুত্রকে চুম্বন কর এবং প্রমাণ কর য়ে তুমি ঈশ্বরের পুত্রের প্রতি ভক্তিতে একনিষ্ঠ যদি তুমি তা না কর তিনি ক্রুদ্ধ হবেন এবং তোমার বিনাশ করবেন| সেই সব লোক যারা প্রভুর ওপর আস্থা রাখে তারা ধন্য| কিন্তু অন্যদের সাবধান হতে হবে, কারণ প্রভু তাঁর ক্রোধ দেখাতে প্রায় প্রস্তুত|
1 “প্রভু, আমার অসংখ্য শত্রু| বহু লোক আমার বিরুদ্ধে চলে গেছে| 2 বহু লোক আমার বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলছে| তারা বলছে, “ঈশ্বর ওকে রক্ষা করবেন না!” 3 কিন্তু হে প্রভু, আপনিই আমার ঢালস্বরূপ| আপনি আমার গৌরব| প্রভু আপনি আমাকে গুরুত্বপূর্ণ করেছেন! 4 আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবো| পবিত্র পর্বত থেকে তিনি আমার ডাকে সাড়া দেবেন! 5 আমি শুয়ে পড়ি এবং বিশ্রাম নিই এবং আমি জানি, আবার আমি জেগে উঠবো| কেন? কারণ প্রভু আমায় আবৃত করে থাকেন| প্রভু আমায় রক্ষা করেন! 6 যদি হাজার সৈন্যও আমায় ঘিরে ফেলে, আমি ঐ শত্রুদের ভয়ে ভীত হব না! 7 প্রভু, উঠে দাঁড়ান|হে আমার ঈশ্বর, আপনি এসে আমায় উদ্ধার করুন! আপনি অসীম শক্তির অধিকারী! আমার শত্রুদের চোযালে আপনি যদি আঘাত করেন আপনি তাদের সবকটা দাঁতই ভেঙে দেবেন| 8 হে প্রভু, আপনার জয়! এবং আপনার আশীর্বাদ রয়েছে আপনার লোকদের ওপর|
1 হে আমার ধার্ম্মিকতার ঈশ্বর, যখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি, আমার ডাকে সাড়া দেবেন! আমার প্রার্থনা শুনুন, আমার প্রতি সদয় হোন! সঙ্কট থেকে আমায় পরিত্রাণ দিন! 2 হে মানব সন্তানগণ, আর কতদিন তোমরা আমার বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলতে থাকবে? আমার সম্পর্কে বলার জন্য তোমরা নতুন নতুন মিথ্যার সন্ধান করছো| তোমরা মিথ্যা কথা বলতে ভালোবাসো| 3 তোমরা জানো য়ে, ঈশ্বর তাঁর অনুগামী ভালো লোকদের কথাই শোনেন| সুতরাং যখন আমি তাঁর কাছে প্রার্থনা করি তখন তিনি আমার কথা শোনেন| 4 যদি কোন কিছু তোমায় বিব্রত করে, তুমি রেগে য়েতে পারো, কিন্তু পাপ করো না| যখন তুমি বিছানায় ঘুমোতে যাও, তখন তুমি অবশ্যই ঐ সব বিষযে চিন্তা করবে না এবং শান্ত হবে| 5 ঈশ্বরকে ধার্ম্মিকতার বলি উত্সর্গ কর এবং প্রভুর ওপর আস্থা রাখ| 6 অনেকে বলে, “কে আমাদের ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা দেখাবে? প্রভু, আপনার দীপ্তিময় মুখখানি আমাদের দেখতে দিন! 7 প্রভু, আপনি আমায় প্রচণ্ড সুখী করেছেন! ফসলের সময়, যখন আমাদের কাছে প্রচুর শস্য় এবং দ্রাক্ষারস ছিল তখনকার চেয়েও আমি এখন বেশী খুশী| 8 আমি বিছানায় গিয়ে নির্বিঘ্নে ঘুমিযে পড়ি| কেন? কারণ, হে প্রভু, নিরাপদে ঘুমোবার জন্য আপনি আমাকে শুইযে দেন|
1 হে প্রভু, আমার কথা শুনুন| আমি যা বলতে চাইছি তা বুঝে নিন| 2 হে আমার ঈশ্বর, হে রাজন, আমার প্রার্থনা শুনুন| 3 হে প্রভু, প্রতিদিন সকালে আপনার সামনে আমার নৈবেদ্য রাখি এবং আপনার সাহায্য প্রার্থনা করি| প্রতিদিন সকালে আপনি আমার প্রার্থনা শোনেন| 4 হে ঈশ্বর, মন্দ লোকরা আপনার কাছে থাকুক, এ আপনি চান না| দুষ্ট লোকরা আপনার উপাসনা করে না| 5 বোকারা আপনার কাছে আসতে পারে না| লোকদের মন্দ কাজ করাকে আপনি ঘৃণা করেন| 6 আপনি মিথ্যাবাদীদের বিনাশ করেন| যারা অন্য লোকদের আঘাত করার জন্য গোপনে ফন্দি আঁটে সেইসব লোকদেরও আপনি ঘৃণা করেন| 7 কিন্তু প্রভু, আপনার বিশাল করুণাধন্য হয়ে, আমি আপনার মন্দিরে যাবো| প্রভু আমার, আপনার প্রতি ভীতি এবং শ্রদ্ধাসহ আমি আপনার মন্দিরে মাথা নত করবো| 8 প্রভু আমার, আপনার সঠিক জীবনযাত্রা আমার কাছে উদ্ঘাটন করুন| লোকেরা আমার দুর্বলতা খুঁজছে| তাই য়েমনভাবে আমার বেঁচে থাকা উচিত্ তা আমায় দেখিয়ে দিন| 9 লোকজন সত্যি কথা বলে না| তারা মিথ্যাবাদী, সত্যকে বিকৃত করে| তাদের মুখ শূন্য কবরের মত| তারা অন্য লোকদের ভালো ভালো কথা বলছে, তারা কেবল তাদের ফাঁদে ফেলতে চাইছে| 10 ঈশ্বর, ওদের শাস্তি দিন| তাদের নিজেদের ফাঁদেই তাদের পড়তে দিন| ঐসব লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছে অতএব ওদের বহু অন্যাযের জন্য ওদের শাস্তি দিন| 11 কিন্তু সেই সব লোক যারা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে, তাদের সুখী করুন| চিরদিনের জন্য সুখী করুন! ঈশ্বর আমার, যারা আপনাকে ভালোবাসে, আপনি তাদের রক্ষা করুন ও শক্তি দিন| 12 হে প্রভু, সত্ লোকের জন্য আপনি যখন ভালো কাজ করেন, তখন আপনি বিরাট বড় ঢালের মত তাদের রক্ষা করেন|
1 হে প্রভু, ক্রুদ্ধ অবস্থায় আমাকে সংশোধন করবেন না| মহাক্রোধে আমাকে শাস্তি দেবেন না| 2 প্রভু, আমার প্রতি সদয় হোন, আমি দুর্বল এবং অসুস্থ| আমায় সুস্থ করে দিন কারণ আমার হাড়গুলো নড়বড় করছে| 3 প্রভু আমার সারা দেহ টল্মল্ করছে| প্রভু সুস্থ হতে আমার আর কতদিন লাগবে? 4 প্রভু ফিরে আসুন এবং আবার আমাকে শক্তিশালী এবং সবল করে দিন| আপনার দয়াগুনে আমাকে পরিত্রাণ করুন| 5 মৃত লোকরা তাদের কবরে আপনাকে স্মরণ করে না| মানুষ মৃত্যুর মুখে এসেও আপনার প্রশংসা করে না| তাই আমায় সুস্থ করে দিন! 6 হে প্রভু, সারা রাত ধরে প্রার্থনা করে আমি নিজেকে ক্ষয করেছি| আমার চোখের জলে আমার বিছানা ভিজে গেছে| 7 আমার শত্রুরা আমাকে যা দুঃখ দিয়েছে তার দরুণ কেঁদে কেঁদে আমার চোখ দুর্বল হয়ে গেছে| 8 মন্দ লোকরা তোমরা চলে যাও| কেন? কারণ প্রভু আমার কান্না শুনেছেন| 9 প্রভু আমার বিনতি শুনেছেন| প্রভু আমার প্রার্থনা গ্রহণ করেছেন এবং আমায় উত্তর দিয়েছেন| 10 আমার সকল শত্রু হতাশ এবং নিরাশ হবে| হঠাত্ একটা কিছু ঘটবে এবং ঐসব শত্রুরা লজ্জায চলে যাবে|
1 প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমি আপনার ওপর নির্ভর করি| যারা আমায় তাড়া করছে তাদের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করুন| আমায় উদ্ধার করুন! 2 যদি আপনি আমায় সাহায্য না করেন, আমি সিংহের হাতে ধরা পড়া পশুর মত অসহায় হয়ে পড়ব| তারা আমাকে টেনে নিয়ে যাবে| আমাকে রক্ষা করার কেউ থাকবে না! 3 প্রভু আমার ঈশ্বর, আমি কোন অন্যায় করি নি| আমি শপথ করে বলছি আমি কোন অন্যায় করিনি! 4 প্রভু আমার ঈশ্বর, যদি আমার বাক্য কোন মন্দ কাজ করে থাকে এবং যদি আমি আমার বন্ধুর প্রতি কোন অন্যায় কাজ করে থাকি এবং যদি কোন কারণ ছাড়াই শত্রুর কাছ থেকে কোন জিনিস নিয়ে থাকি বা আক্রমণ করে থাকি তাহলে আমার শত্রুরা য়েন আমাকে খুঁজে ধরে ফেলে এবং আমাকে হত্যা করে আমার জীবন ধূলোয় মিশিয়ে দেয় এবং আমার আত্মাকে পাতালে পাঠিয়ে দেয়|” 5 6 7 প্রভু, লোকদের বিচার করুন| সকল জাতিদের আপনার সঙ্গে সঙঘবদ্ধ করুন| 8 এবং লোকদের বিচার করুন| হে প্রভু, আমারও বিচার করুন| প্রমাণ করুন আমি সত্য পথে আছি| প্রমাণ করুন আমি নিষ্পাপ| 9 মন্দ লোকদের শাস্তি দিন, সত্ লোকদের সাহায্য করুন| হে ঈশ্বর, আপনিই মঙ্গলময়| আপনি লোকের হৃদয়ের ভেতরে কি আছে তা দেখতে পান| 10 যাদের হৃদয় সত্ তাদের ঈশ্বর সাহায্য করেন| তাই ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করবেন| 11 ঈশ্বর একজন সুবিচারক| সব সময় তিনি মন্দের বিরুদ্ধে বলেন| 12 ঈশ্বর তাঁর আক্রমণ থামাবেন না| তিনি তাঁর আক্রমণ থেকে পিছু হঠবেন না|তিনি তাঁর ধনুকে টান দিয়েছেন এবং শত্রুদের প্রতি তাঁর লক্ষ্য স্থির রেখেছেন| 13 তিনি মারণাস্ত্র তৈরী করে রেখেছেন এবং তাঁর তীরগুলো ধারালো করেছেন| 14 কিছু লোক সর্বদাই মন্দ ফন্দি আঁটে| তারা গোপনে ফন্দি করে এবং মিথ্যা কথা বলে| 15 তারা অন্য লোকদের ফাঁদে ফেলতে চায় এবং আঘাত করতে চায়| কিন্তু নিজেদের ফাঁদে পড়েই ওরা আহত হবে| 16 যা শাস্তি ওদের প্রাপ্য ওরা সেই শাস্তিই পাবে| অপরের প্রতি ওরা নির্দয ছিল| ওদের যা প্রাপ্য ওরা তাই পাবে| 17 আমি প্রভুর প্রশংসা করি, কারণ তিনি ভালো| আমি পরাত্পর প্রভুর নামের প্রশংসা করি|
1 হে প্রভু আমাদের সদাপ্রভু, সারা পৃথিবীতে আপনার নামই সব থেকে মহিমান্বিত! আপনার নাম স্বর্গলোক জুড়ে আপনার প্রশংসা এনে দেয়| 2 শিশু ও দুগ্ধপোষ্যদের মুখ থেকে আপনার প্রশংসা গীত বেরিয়ে আসে| আপনার শত্রুদের নীরব করে দেওয়ার জন্য আপনি ওদের মুখে এইসব শক্তিশালী গান দিয়েছেন| 3 আপনি নিজের হাত দিয়ে য়ে স্বর্গ সৃষ্টি করেছেন তার দিকে চেয়ে দেখি| আপনার সৃষ্টি করা চাঁদ এবং তারা দেখি এবং আমি বিস্মিত হই| 4 লোকরা আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? কেন আপনি তাদের কথা স্মরণ করেন? কেন লোকরা আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ? আপনি তাদের দিকে তাকিযেই বা দেখেন কেন? 5 কিন্তু মানুষ আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ! আপনি মানুষকে প্রায় দেবতার মত করেই বানিয়েছেন| এবং গৌরব ও সম্মান দিয়ে আপনি মানুষকে মহিমান্বিত করেছেন| 6 আপনি যা যা সৃষ্টি করেছেন তার দায়িত্ব আপনি মানুষের হাতেই দিয়েছেন| সব কিছুই আপনি মানুষের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন| 7 মেষ, গবাদিপশু সহ অন্যান্য বন্য জন্তুদের ওপরে মানুষ কর্ত্তৃত্ব করেছে| 8 আকাশের পাখী ও জলের মাছের ওপর কর্ত্তৃত্ব করেছে| 9 হে প্রভু আমাদের সদাপ্রভু, সমগ্র বিশ্বে আপনার নামই সব থেকে মহিমান্বিত|
1 আমি আমার সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে প্রভুর প্রশংসা করি| প্রভু, আপনার সৃষ্টি করা প্রত্যেকটি আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় সম্পর্কে আমি বলবো| 2 আপনি আমাকে অত্যন্ত সুখী করেছেন| হে পরাত্পর ঈশ্বর, আমি আপনার নামের প্রশংসা করি| 3 আপনার কাছ থেকে আমার শত্রুরা দূরে পালিয়ে গেছে| কিন্তু তাদের পতন হবে ও তারা বিনষ্ট হবে| 4 আপনি একজন সুবিচারক| আপনার সিংহাসনে আপনি ধর্ম বিচারকের মতই বসেছিলেন| হে প্রভু, আপনি আমার অবস্থার কথা শুনেছিলেন এবং আমার সম্বন্ধে আপনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন| 5 আপনি সেসব লোকের সমালোচনা করেছেন| প্রভু, সেই সব দুষ্ট লোককে আপনি বিনষ্ট করেছেন| যারা বেঁচে রয়েছে, তাদের নামের তালিকা থেকে আপনি সেই সব দুষ্ট লোকের নাম চিরদিনের জন্য মুছে দিয়েছেন| 6 শত্রুরা নিশ্চিহ্ন হয়েছে! প্রভু, আপনি তাদের নগরসমূহ ধ্বংস করেছেন! এখন শুধুমাত্র ভাঙ্গা বাড়ীগুলো পড়ে আছে| সেই সব দুষ্ট লোকদের কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেবার মত কিছুই আর অবশিষ্ট নেই| 7 কিন্তু প্রভু চিরদিনের জন্য শাসন করেন| প্রভু তাঁর রাজ্যকে শক্তিশালী করেছেন| পৃথিবীতে ন্যায় আনবার জন্য তিনি এই কাজ করেছেন| 8 প্রভু পৃথিবীতে প্রত্যেককে ন্যায় বিচার দেন| প্রভু সব জাতিদের সত্ভাবে বিচার করেন| 9 বহু মানুষ তাদের নানাবিধ সমস্যার ফাঁদে আবদ্ধ এবং জর্জরিত| তাদের সমস্যার ভারের নীচে তারা পিষ্ট হয়ে গেছে| প্রভু, তাদের জন্য আপনি নিরাপদ স্থান হোন য়েন তারা আপনার কাছে য়েতে পারে| 10 লোকেরা যারা আপনার নাম জানে তারা আপনার ওপর বিশ্বাস রাখবে| প্রভু, লোকজন যদি আপনার কাছে আসে, আপনি তাদের সাহায্য না করে ফিরিয়ে দেবেন না| 11 হে সিয়োন-বাসীরা, তোমরা প্রভুর প্রশংসা কর| প্রভুর মহত্ কর্মের কথা অন্যান্য জাতিকে বল| 12 যারা প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিল তিনি তাদের কথা মনে রেখেছেন| সেই বঞ্চিত দরিদ্র লোকেরা সাহায্য প্রার্থনা করেছিল| প্রভু তাদের ভুলে যান নি| 13 আমি ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করেছিলাম: “প্রভু, আমার প্রতি সদয় হোন| দেখুন, আমার শত্রুরা আমায় আঘাত করেছে| আমাকে ‘মৃত্যুর ফটকগুলি’ থেকে রক্ষা করুন| 14 তাহলে, হে প্রভু, জেরুশালেম শহরের ফটকে আমি আপনার প্রশংসাগীত করতে পারবো| এতে আমি সুখী হবো| কারণ আপনি আমায় রক্ষা করেছিলেন| 15 অন্য সব জাতি, লোকদের ফাঁদে ফেলার জন্য মাটিতে গর্ত খুঁড়েছে| কিন্তু তারা নিজেরাই নিজের ফাঁদে পড়ে গেছে| অন্সব লোকজনকে ধরবে বলে ওরা লুকিয়ে জাল পেতেছিল কিন্তু ওরা নিজের জালেই ধরা পড়ে গেছে| 16 প্রভু ওই মন্দ লোকদের ধরেছেন| তাই লোকজন জানতে পারলো, যারা মন্দ কাজ করে প্রভু তাদের শাস্তি দেন| 17 যারা ঈশ্বরকে ভুলে যায় তারাই মন্দ| তারা পাতালে পতিত হবে| 18 কখনও কখনও এমন মনে হয় য়ে, সমস্যা জর্জরিত মানুষকে ঈশ্বর ভুলে গেছেন| এমনও মনে হচ্ছে য়ে, এইসব দরিদ্র লোকদের কোন আশা বাকী নেই| কিন্তু ঈশ্বর কখনই তাদের চিরদিনের মত ভোলেন না| 19 হে প্রভু, উঠুন এবং জাতিগণের বিচার করুন| মানুষকে একথা ভাবতে দেবেন না য়ে তারা শক্তিশালী| 20 লোকদের কিছু শিক্ষা দিন| তাদের একথা বুঝতে দিন য়ে তারা কেবলই মানুষ|
1 প্রভু, আপনি এত দূরে থাকেন কেন? সমস্যা জর্জরিত মানুষ আপনাকে দেখতে পায় না| 2 অহঙ্কারী এবং দুষ্ট লোকরা মন্দ ফন্দি আঁটছে এবং তারা দরিদ্র লোকেদের আঘাত করে| 3 মন্দ লোকরা যা চায় তার বড়াই করে| ঐসব লোভী লোকরা ঈশ্বরের নিন্দা করে| এই ভাবেই মন্দ লোকেরা প্রকাশ করে য়ে তারা প্রভুকে ঘৃণা করে| 4 মন্দ লোকরা ঈশ্বরকে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম্ভিক| তারা রাশি রাশি মন্দ ফন্দি আঁটে| তারা এমনভাব করে য়েন ঈশ্বরের কোন অস্তিত্ব নেই| 5 মন্দ লোকরা সর্বদাই কুটিল কাজকর্ম করে| এমনকি তারা ঈশ্বরের বিধিসকল ও মহান শিক্ষামালাকে লক্ষ্য করে না|ঈশ্বরের শত্রুরা তাঁর শিক্ষামালাকে উপেক্ষা করে| 6 ঐসব লোকজন মনে করে, কোনদিন ওদের খারাপ কিছু হবে না| তারা বলে, “আমরা সব দিনই মজা করবো আমাদের কোন শাস্তি হবে না|” 7 ঐসব লোকরা সর্বদা অভিশাপ দিচ্ছে| অন্যান্য লোকজন সম্পর্কে তারা সর্বদাই কটু ও মিথ্যা কথা বলে চলেছে| সর্বদাই তারা অহিতকর কাজ করার ফন্দি আঁটে| 8 ঐসব লোক অন্যান্য লোকদের ধরার জন্য গোপন স্থানে লুকিয়ে থাকে| তারা লুকিয়ে থাকে, মানুষকে আঘাত করার জন্য খুঁজতে থাকে| নির্দোষ লোকদের ওরা হত্যা করে| 9 মন্দ লোকরা সেই সব সিংহের মত যারা তাদের আহার্য় পশুকে ধরার জন্য ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করতে থাকে| তারা দরিদ্র লোকদের আক্রমণ করে| মন্দ লোকদের তৈরী ফাঁদে দরিদ্র লোকরা ধরা পড়ে| 10 ঐসব লোক হতভাগ্য ও বিড়ম্বিত মানুষকে বার বার আঘাত করে| 11 এই কারণে ভাগ্যহত লোকরা ভাবে, “ঈশ্বর আমাদের ভুলেই গেছেন! আমাদের থেকে তিনি চিরদিনের জন্য বিমুখ হয়েছেন! আমাদের ওপর যা যা ঘটে চলেছে প্রভু তা দেখছেন না!” 12 প্রভু জেগে উঠুন এবং কিছু করুন! ঈশ্বর, ঐসব মন্দ লোককে শাস্তি দিন! ঐসব বঞ্চিত দরিদ্র লোকদের ভুলে যাবেন না! 13 মন্দ লোকরা কেন ঈশ্বরকে অবজ্ঞা করে? কারণ তারা ভাবে, ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেবেন না| 14 প্রভু, মন্দ লোকরা য়ে সব নির্দয ও অহিতকর কাজ করে, নিশ্চয় আপনি তা দেখতে পান| ঐসবের দিকে দেখুন এবং কিছু করুন! সমস্যাগ্রস্ত মানুষ আপনার সাহায্যের দিকে চেয়ে রয়েছে| হে প্রভু, আপনিই সেইজন যিনি অনাথদের সাহায্য করেন| অতএব তাদের সাহায্য করুন! 15 প্রভু, মন্দ লোকদের বিনাশ করুন| 16 প্রভু চিরকালের এবং অনন্তকালের রাজা| বিদেশী জাতিগুলি তাঁর দেশ থেকে অদৃশ্য হয়েছে| 17 হে প্রভু, দরিদ্র লোকরা কি চায় তা আপনি শুনেছেন| তাদের প্রার্থনা শুনুন এবং তারা যা চায় তাই করুন! 18 প্রভু পিতৃ-মাতৃহীন সন্তানদের রক্ষা করুন| দুঃখী লোকেদের অধিক যন্ত্রণার সম্মুখীন করবেন না| এমন করুন য়েন মন্দ লোকরা এখানে থাকতে ভয় পায়|
1 আমি প্রভুর ওপর বিশ্বাস রাখি| তবে কেন তোমরা আমায় দৌড়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছিলে? তুমি আমায় বলেছিলে, “পাখীর মত তোমার পর্বতে উড়ে য়েতে!” 2 মন্দ লোকরা শিকারীর মত, তারা অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে| তারা ধনুকের ছিলা টেনে ধরে| তারা তাদের তীর লোকের দিকে তাক করে এবং সাধু ও সত্ লোকের হৃদয়ে তা সরাসরি বিদ্ধ করে| 3 সমাজে ভিতগুলোই যদি নষ্ট হয়ে যায়, তবে সত্ লোকরা কি করবে? 4 প্রভু তাঁর পবিত্র মন্দিরে রয়েছেন| প্রভু স্বর্গে তাঁর সিংহাসনে বসে আছেন| এই পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে, তার সবই তিনি দেখতে পান| লোকরা সত্যিকারের ভাল না মন্দ তা জানবার জন্য প্রভু লোকেদের খুব কাছ থেকে ভালভাবে নিরীক্ষণ করেন| 5 প্রভু সত্ লোকদের খোঁজেন| কিন্তু হিংসাশ্রযী বদ লোকদের পরিত্যাগ করেন| 6 মন্দ লোকদের ওপর তিনি জ্বলন্ত কযলা ও গন্ধক বর্ষণ করবেন| ঐসব মন্দ লোক উত্তপ্ত ও অগ্নিময় বাতাস ছাড়া আর কিছুই পাবে না| 7 কিন্তু প্রভু ভালো| য়েসব লোক ভাল কাজ করে তিনি তাদের ভালোবাসেন| সত্ লোকরা তাঁরই সঙ্গে থাকবে এবং তাঁকে দেখতে পাবে|
1 হে প্রভু, আমায় রক্ষা করুন! ভালো লোকরা সবাই চলে গেছে| প্রকৃত বিশ্বাসীদের এই পৃথিবীর লোকদের সঙ্গে রাখা হয় না| 2 লোক তার প্রতিবেশীদের মিথ্যা কথা বলে| প্রত্যেকটি লোক তার প্রতিবেশীকে তোষামোদ করে এবং ঠকাবার জন্য মিথ্যে কথা বলে| 3 য়ে ঠোঁট দিয়ে মানুষ মিথ্যা কথা বলে, সেই ঠোঁটগুলি প্রভুর কেটে ফেলা উচিত্| য়ে জিভ দিয়ে তারা বড় বড় গল্প বলেছে, প্রভুর সেই জিভগুলিও কেটে ফেলা উচিত্| 4 সেই লোকেরা বলছে, “আমরা প্রকৃত পক্ষে মিথ্যা কথা বলবো এবং গুরুত্বপূর্ণ লোক হব| আমরা জানি কি বলতে হবে, তাই কেউই আমাদের মনিব হবে না|” 5 কিন্তু প্রভু বলছেন: “মন্দ লোকরা দুর্বলদের কাছ থেকে চুরি করেছে| নিঃসহায় লোকদের জিনিষ ওরা নিয়ে নিয়েছে| কিন্তু এখন আমি নিজে দাঁড়িয়ে, ঐসব ভারাক্রান্ত লোকদের রক্ষা করবো|” 6 প্রভুর কথাগুলি, জ্বলন্ত আগুনে গলানো রূপোর মত সত্য ও খাঁটি| কথাগুলি সেই রূপোর মত খাঁটি যাকে সাতবার গলিয়ে শুদ্ধ করা হয়েছে| 7 হে প্রভু, নিঃসহায় মানুষের দেখাশুনা করুন| তাদের এখন এবং চিরদিনের জন্য রক্ষা করুন! 8 মন্দ লোকরা আমাদের চারদিকে রয়েছে| তারা সব জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ লোকের মত ব্যবহার করে| এদিকে মানুষের নির্লজ্জ কাজগুলি প্রশংসা পায়|
1 হে প্রভু, আর কতক্ষণ আপনি আমায় ভুলে থাকবেন? আপনি কি চিরদিনের জন্য আমায় ভুলে যাবেন? আর কতদিন আমার কাছ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখবেন?পরিচালকের প্রতি| দায়ূদের একটি গীত| 2 আর কতকাল আমি এই চিন্তাগুলোর সঙ্গে য়ুদ্ধ করব? আর কতকাল আমার হৃদয় এই দুঃখ ভোগ করবে? আর কতদিন আমার শত্রুরা আমায় পরাজিত করবে? 3 হে প্রভু আমার ঈশ্বর, আমার দিকে তাকান! আমার প্রশ্নের উত্তর দিন! আমার প্রশ্নের উত্তর আমায় জানিয়ে দিন; নয়তো আমি মরে যাবো! 4 যদি তাই ঘটে, আমার শত্রুরা বলবে, “আমি ওকে মেরেছিলাম!” আমাকে পরাজিত করতে পারলে আমার শত্রুরা খুশী হবে| 5 হে প্রভু, আমি আপনার প্রকৃত ভালবাসার ওপর আস্থা রেখেছিলাম| আপনি আমায় রক্ষা করেছেন এবং সুখী করেছেন! 6 আমি প্রভুর উদ্দেশ্যে আনন্দ গান গাই, কারণ তিনি আমার জন্য হিতকর কাজ করেছেন|
1 একজন দুষ্ট নির্বোধ লোক মনে মনে বলে, “ঈশ্বর নেই|” এইসব লোকরা ভয়ঙ্কর ও দুষ্ট কাজকর্ম করে| তাদের মধ্যে একজনও নেই য়ে ভালো কাজ করে| 2 ওদের মধ্যে ঈশ্বরের সাহায্য কামনা করে এমন দেখবার জন্য প্রভু স্বর্গ থেকে লোকদের প্রতি লক্ষ্য রেখেছিলেন| (জ্ঞানী লোকরা সাহায্যের জন্য ঈশ্বরমুখী হয়|) 3 কিন্তু প্রত্যেকটি লোকই ঈশ্বরের থেকে বিমুখ হয়ে গেছে| সব লোকই, মন্দ লোকে পরিণত হয়েছে| এমনকি একটা লোকও ভালো কাজ করে নি! 4 মন্দ লোকরা আমার লোকদের বিনষ্ট করেছে| ওই সব মন্দ লোকরা ঈশ্বরকে চেনে না| মন্দ লোকদের জন্য গলাধঃকরণ করার মত প্রচুর খাদ্য রয়েছে| এমনকি তারা প্রভুর উপাসনা পর্য়ন্ত করে না| 5 ঐসব মন্দ লোক, একজন দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে উপদেশ শুনতে চায় না| কেন? কারণ ওই দরিদ্র লোকটি ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে| কিন্তু ঈশ্বর তাঁর সত্ লোকদের সঙ্গে থাকেন| সুতরাং মন্দ লোকদের ভয়ের অনেক কারণ আছে| 6 7 সিয়োন পর্বত থেকে কে ইস্রায়েলকে রক্ষা করে? তিনি বয়ং প্রভু যিনি ইস্রায়েলকে রক্ষা করেন! প্রভু যখন আবার তাঁর লোকদের তাদের দেশ থেকে সমৃদ্ধশালী করেন, তখন যাকোবের পরিবার আনন্দ করুক| ইস্রায়েলের লোকেরা সুখী হোক|
1 প্রভু, কে আপনার পবিত্র তাঁবুতে থাকতে পারে? কে আপনার পবিত্র পর্বতে থাকতে পারে? 2 একমাত্র সেই ব্যক্তি য়ে পবিত্রভাবে জীবনযাপন করে, য়ে সত্ কাজ করে, য়ে অন্তর থেকে সত্য কথা বলে সেই আপনার পবিত্র পর্বতে বাস করতে পারে| 3 এই ধরণের লোক, অন্যান্য মানুষ সম্পর্কে খারাপ কথা বলে না| সেই লোক তার প্রতিবেশীদের প্রতি খারাপ আচরণ করে না| সেই লোক, তার নিজের পরিবার সম্পর্কে লজ্জাজনক কিছু বলে না| 4 ঈশ্বরকে যারা ঘৃণা করে সেই লোক, তাদের সম্মান করে না| কিন্তু যারা প্রভুর সেবা করে, সেই লোক তাদের সম্মান প্রদর্শন করে| যদি সে প্রতিবেশীর কাছে কোন প্রতিশ্রুতি করে থাকে, তবে সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করে| 5 যদি সেই লোক কাউকে টাকা দেয়, সে সেই ঋণের জন্য সুদ চায় না| এমনকি সেই লোক, সহজ সরল মানুষের অমঙ্গল করার জন্য টাকা পয়সাও গ্রহণ করে না| যদি কোন লোক এই সত্ মানুষটির মত জীবনযাপন করে, তবে সে সর্বদাই ঈশ্বরের কাছে থাকবে|
1 হে ঈশ্বর, আমায় রক্ষা করুন| কারণ আমি আপনার ওপর নির্ভর করি| 2 আমি প্রভুকে বলেছিলাম, “প্রভু, আপনিই আমার সদাপ্রভু| যা কিছু ভালো জিনিস এখন আমার আছে তা আপনার কাছ থেকেই এসেছে|” 3 পৃথিবীতে তাঁর অনুচরদের জন্য প্রভু বিস্ময়কর কাজ করেন| প্রভু দেখিয়ে দেন য়ে প্রকৃতই তিনি ঐসব লোকেদের ভালোবাসেন| 4 কিন্তু যারা অন্যান্য দেবতার পূজা করতে ছুটে যায় তারা অনেক যন্ত্রণায় পড়বে| য়ে রক্ত তারা ঐসব দেবমূর্ত্তিতে উত্সর্গ করে, আমি সেই উত্সর্গের সামিল হব না| এমনকি আমি ঐসব দেবমূর্ত্তির নামও উচ্চারণ করবো না| 5 না, আমার ভাগের অংশ, আমার পানপাত্র প্রভুর কাছ থেকে আসে| প্রভু আপনি আমায় সহায়তা দিয়েছেন| আপনি আমায় আমার অংশ দিয়েছেন| 6 আমার অংশটুকু অবশ্যই চমত্কার| আমার উত্তরাধিকার সত্যিই সুন্দর| 7 আমি প্রভুর প্রশংসা করি, কারণ তিনি আমায় উত্তমরূপে শিক্ষাদান করেছেন| এমনকি নিশাকালে, তাঁর নির্দেশসমূহ তিনি আমার অন্তরের গভীরে রেখে যান| 8 আমি সর্বদাই প্রভুকে আমার সামনে রাখি| এবং আমি কখনই তাঁর দক্ষিণ পাশ ছেড়ে যাবো না| 9 তাই, আমার হৃদয় এবং আত্মা অত্যন্ত খুশী হবে| আমার দেহও নিরাপদে বেঁচে থাকবে| 10 কেন? কারণ হে প্রভু পাতালে আপনি আমার আত্মা ছেড়ে চলে যাবেন না| আপনার বিশ্বস্ত জনকে আপনি কবরে পচতে দেবেন না| 11 আপনি আমাকে বাঁচার প্রকৃত পথ সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করবেন| হে প্রভু, শুধুমাত্র আপনার সঙ্গে থাকলেই জীবনের চরম শান্তি লাভ হবে| আপনার ডানদিকে থাকতে পারলেই চিরন্তন সুখ আসবে|
1 হে প্রভু, ন্যায্য বিচারের জন্য আমার প্রার্থনা শুনুন| আমি উচ্চস্বরে আপনাকে ডাকছি এবং আমি যা বলছি, সত্ভাবে বলছি| অতএব, আমার প্রার্থনা শুনুন| 2 আপনি আমার সম্পর্কে যথায়থ সিদ্ধান্ত নেবেন| আপনি সত্যকে দেখতে পান| 3 আপনি আমার অন্তরের গভীর পর্য়ন্ত দেখেছেন| সারারাত আপনি আমার সঙ্গে ছিলেন| আপনি আমায় জিজ্ঞাসা করেছেন এবং আমার মধ্যে কোন ত্রুটি পান নি| আমি কোন মন্দ ফন্দি করি নি| 4 আপনার নির্দেশ পালন করতে গিয়ে, মানুষের পক্ষে য়তখানি কঠিন প্রচেষ্টা সম্ভব, তা আমি করেছি| 5 আমি আপনার পথ অনুসরণ করেছি| আমার দুটি পা, আপনার প্রদর্শিত জীবনের চলার পথ, কখনও পরিত্যাগ করে নি| 6 হে ঈশ্বর, আমি আপনাকে ডাকছি, দয়া করে আমায় উত্তর দিন| আমার কথা শুনুন, আমার প্রার্থনা শুনুন| 7 হে ঈশ্বর, যারা আপনার ওপর নির্ভর করে, তাদের আপনি সাহায্য করেন| সেই সব লোক আপনার ডানদিকে দাঁড়াবে| তাই দয়া করে, আপনার এক অনুগামীর প্রার্থনা শুনুন| 8 আপনার চোখের মণির মত আমায় রক্ষা করুন| আপনার ডানার ছায়ায় আমায় আশ্রয় দিন| 9 প্রভু, সেই সব মন্দ লোক, যারা আমাকে বিনষ্ট করতে চাইছে, তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| যারা আমার চার পাশে থেকে আমাকে আঘাত করতে চাইছে, তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| 10 ঐসব মন্দ লোক এত অহঙ্কারী য়ে তারা ঈশ্বরের বাক্য শুনতেই চায় না এবং তারা নিজেদের সম্পর্কে বড়াই করে| 11 ঐসব লোক আমাকে তাড়া করেছে| এখন তারা আমার চারপাশে রয়েছে| তারা আক্রমণ করার জন্য তৈরী হয়ে রয়েছে| 12 ঐসব মন্দ লোক সিংহের মত অন্য পশুকে হত্যা করে খাবার জন্য অপেক্ষা করছে| তারা সিংহের মত লুকিয়ে থাকে, আক্রমণের জন্য প্রস্তুত থাকে| 13 প্রভু উঠুন এবং শত্রুদের কাছে যান| ওদের দিয়ে আত্মসমর্পণ করান| আপনার তরবারি ব্যবহার করে আমাকে মন্দ লোকদের হাত থেকে রক্ষা করুন| 14 প্রভু, আপনার ক্ষমতা দ্বারা দুষ্ট লোকদের বসতভূমি থেকে উচ্ছেদ করুন| প্রভু, বহু লোক আপনার সাহায্যের জন্য এসেছে| এই জীবনে এই সব লোকদের খুব বেশী কিছু নেই| ঐসব লোককে প্রচুর খাদ্য দিন| ওদের শিশুরা যা চায় সব দিন| ওদের শিশুদের এতই বেশী পরিমান দিন য়েন, ওরা ওদের শিশুদের জন্যও উদ্বৃত্ত খাদ্য রেখে য়েতে পারে| 15 আমি বিচারের জন্য প্রার্থনা করেছি| তাই হে প্রভু আমি আপনাকে দেখবো এবং হে প্রভু, আপনাকে দেখে পরিপূর্ণভাবে পরিতৃপ্ত হব|
1 তিনি বললেন, “প্রভু আমার শক্তি, আমি আপনাকে ভালোবাসি!” 2 প্রভুই আমার শিলা, আমার দুর্গ, আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| আমার ঈশ্বর, আমার শিলা| আমি তাঁর কাছে নিরাপত্তার জন্য ছুটে যাই| ঈশ্বরই আমার ঢালস্বরূপ| তাঁর শক্তি আমায় রক্ষা করে| দুর্গম পাহাড়ে প্রভুই আমার গোপন আশ্রয়স্থল| 3 ওরা আমায় উপহাস করেছে| কিন্তু আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছি এবং আমার শত্রুদের কাছ থেকে রক্ষা পেয়েছি! 4 আমার শত্রুরা আমায় হত্যা করতে চাইছিল! আমার চারপাশে ছিল মৃত্যুর দড়ি| এক তীব্র বন্যা আমাকে পাতালের দিকে ভাসিযে নিয়ে যাচ্ছিল| 5 আমার চারপাশে ছিল কবরের রজ্জুগুলি| আমার সামনে পড়েছিল মৃত্যুর ফাঁদ| 6 ফাঁদে বদ্ধ হয়ে, আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চাইলাম| হ্যাঁ, আমি আমার ঈশ্বরকে ডাকলাম| ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে ছিলেন| তিনি আমার কন্ঠস্বর শুনতে পেলেন| তিনি আমার সাহায্যের জন্য কান্না শুনতে পেলেন| 7 সারা পৃথিবী কেঁপে উঠলো, পর্বতের ভিতগুলো পর্য়ন্ত নড়ে উঠেছিল| কেন? কারণ প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন! 8 ঈশ্বরের নাক দিয়ে ধোঁযা বেরিয়ে এলো| ঈশ্বরের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো জ্বলন্ত অগ্নিশিখা| তাঁর দেহ থেকে জ্বলন্ত আগুন বিচ্ছুরিত হতে লাগলো| 9 আকাশমণ্ডল বিদীর্ণ করে প্রভু নীচে নেমে এলেন! একটি ঘন কালো মেঘের ওপর তিনি দাঁড়িয়েছিলেন| 10 বাতাসের পাখায় চড়ে তিনি আকাশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে উড়ে বেড়াচ্ছিলেন| বাতাসের ওপর ভর করো, তিনি সুদূর শূন্য়ে ভেসে বেড়াচ্ছিলেন| 11 প্রভু একটা ঘন কালো মেঘের মধ্যে লুকিয়েছিলেন, সেই মেঘ তাঁকে তাঁবুর মত ঘিরেছিল| তিনি ঘন বজ্রময় মেঘের মধ্যে লুকিয়েছিলেন| 12 তারপর মেঘ ভেদ করে ঈশ্বরের আলোকময় ঔজ্জ্বল্য বেরিয়ে এলো| সেখানে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি এবং বিদ্য়ুতের ঝলকানি দেখা দিল| 13 আকাশ থেকে প্রভু বিদ্য়ুতের মত ঝলসে উঠলেন! পরাত্পরের রব শোনা গেল| সেখানে তখন শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রসহ অগ্নিময় বিদ্য়ুতের ঝলক ছিল| 14 প্রভু তাঁর তীরসমূহনিক্ষেপ করে শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করে দিলেন| প্রভু তীরের মত ক্ষিপ্রগতিতে অনেকগুলো অশনিপাত করলেন এবং লোকরা বিভ্রান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়লো| 15 প্রভু আপনি উচ্চস্বরে আপনার আজ্ঞা দিলেন এবং তীব্র বেগে বাতাস বইতে শুরু করলো| জল পেছনে সরে গেল এবং আমরা সমুদ্রের তলদেশ দেখতে সমর্থ হলাম| আমরা পৃথিবীর ভিত দেখতে পেলাম| 16 প্রভু ওপর থেকে নীচে পৌঁছলেন এবং আমাকে রক্ষা করলেন| প্রভু আমাকে গভীর জল থেকে টেনে তুললেন| 17 আমার শত্রুরা আমার চেয়ে শক্তিশালী ছিলো| ওই সব লোক আমায় ঘৃণা করেছে| আমার কাছে আমার শত্রুরা বেশ শক্তিশালীই ছিল, তাই ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেছেন! 18 আমি সমস্যার মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম এবং আমার শত্রুরা আমায় আক্রমণ করেছিল| কিন্তু আমাকে সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রভু সেখানে ছিলেন! 19 প্রভু আমায় ভালোবাসেন, তাই তিনি আমায় উদ্ধার করলেন. তিনি আমায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেলেন| 20 আমি নিস্পাপ, তাই প্রভু আমাকে আমার য়োগ্য পুরস্কার দেবেন| আমি কোন অন্যায় কাজ করি নি, তাই তিনি আমার জন্য হিতকর কাজই করবেন| 21 কেন? কারণ আমি প্রভুর নির্দেশ পালন করেছি! আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন পাপ করি নি| 22 আমি সর্বদাই প্রভুর নির্দেশসমূহ স্মরণে রাখি| আমি তাঁর নির্দেশিত বিধি পালন করি! 23 তাঁর সামনে আমি সর্বদাই সত্ ও বিশুদ্ধ ছিলাম| আমি নিজেকে অন্যায় কাজ থেকে দূরে রেখেছিলাম| 24 এই কারণে প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন! কেন? কারণ আমি নির্দোষ! প্রভু দেখেছেন, আমি কোন গর্হিত কাজ করি নি| তাই আমার প্রতি তিনি হিতকর কাজই করবেন| 25 প্রভু, যদি কোন লোক প্রকৃতই আপনাকে ভালোবাসে আপনিও তাঁর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা প্রদর্শন করুন| আপনার প্রতি কেউ যদি সত্ ও একনিষ্ঠ হয়, আপনিও তার প্রতি সত্ হন| 26 হে প্রভু, যারা ভাল এবং শুচি তাদের কাছে আপনিও ভাল এবং শুচি| কিন্তু, নীচতম এবং ক্রুরতম ব্যক্তিকেও আপনি পরাক্রমী করতে পারেন| 27 প্রভু, নম্র লোকদের আপনি সাহায্য করেন| কিন্তু উদ্ধত ও অহঙ্কারী লোকদের আপনি অবদমিত করেন| 28 প্রভু, আপনিই আমার প্রদীপ জ্বালান| আমার ঈশ্বর, আমার চারদিকের অন্ধকারকে আলোকিত করেন! 29 আপনার সাহায্যে হে প্রভু, আমি সৈন্যদের সঙ্গে ছুটতে পারি| ঈশ্বরের সাহায্য় পেয়ে, আমি শত্রুদের দেওয়ালের ওপর চড়তে পারি| 30 ঈশ্বর সর্বদাই যা সঠিক তাই করে থাকেন| প্রভুর বাক্য পরীক্ষা করা হয়েছে| যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখে, তিনি তাদের রক্ষা করেন| 31 প্রভু ছাড়া আর অন্য কোন ঈশ্বর নেই| আমাদের প্রভু ছাড়া আর কোন শিলা নেই| 32 ঈশ্বর আমায় শক্তি দেন| তিনি আমাকে পবিত্র জীবনযাপন করতে সাহায্য করেন| 33 ঈশ্বর আমাকে হরিণের মত দ্রুত দৌড়তে সাহায্য করেন| উচ্চস্থানে তিনিই আমাকে অবিচল রাখেন| 34 ঈশ্বর আমাকে যুদ্ধের কৌশল শিক্ষা দেন, তাই আমার বাহুগুলি একটি শক্তিশালী ধনুকে ছিলা পরাতে পারে| 35 ঈশ্বর আপনি আমায় রক্ষা করেছেন এবং জয়ী হতে সাহায্য করেছেন| আপনার ডান হাত দিয়ে আপনি সহায়তা করেছেন| আমার শত্রুকে পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন| 36 আমার পা এবং গোড়ালি শক্ত করে দিন, য়েন আমি হোঁচট না খেয়ে দ্রুত দৌড়তে পারি| 37 আমি য়েন আমার শত্রুদের তাড়া করতে পারি এবং তাদের ধরে ফেলতে পারি| তাদের শেষ না করে আমি আর ফিরবো না! 38 আমি আমার শত্রুদের পরাজিত করবো| তারা আর উঠে দাঁড়াবে না| আমার সব শত্রু আমার পাযের নীচে পড়ে থাকবে| 39 ঈশ্বর, যুদ্ধে আপনিই আমাকে শক্তিশালী করেছেন| আপনিই আমার শত্রুকে আমার সামনে ভূপতিত করেছেন| 40 আমার শত্রুদের পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন এবং আমি আমার বিরোধীদের বিনষ্ট করেছি! 41 আমার শত্রুরা সাহায্যের জন্য চিত্কার করেছিল| কিন্তু তাদের সাহায্য করার কেউ ছিল না| তারা এমনকি প্রভুকেও ডেকেছিল, কিন্তু প্রভু তাদের উত্তর দেন নি| 42 আমি আমার শত্রুদের মেরে টুকরো টুকরো করে দিয়েছি| তারা ধূলোর মত বাতাসে উড়ে গিয়েছিল| আমি তাদের একেবারে খণ্ড বিখণ্ড করে ছেড়েছি| 43 যারা আমার বিরুদ্ধে য়ুদ্ধ করছে আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করুন| আমাকে সেই সব জাতির নেতা বানিয়ে দিন| য়ে সব লোকদের আমি জানি না, তারা আমার সেবা করবে| 44 সেই সব লোক আমার সম্পর্কে শোনামাত্রই আমার আজ্ঞাকারী হবে| ঐ বিদেশীরা আমায় ভয় করবে| 45 ঐসব বিদেশীরা ভয়ে শুকিয়ে যাবে| ভয়ে কম্পমান হয়ে ওরা ওদের গোপন ড়েবা থেকে বেরিয়ে আসবে| 46 প্রভু জীবন্ত! আমি আমার শিলার প্রশংসা করি| ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেন| তিনি মহান! 47 ঈশ্বর আমার জন্য আমার শত্রুদের শাস্তি দিয়েছেন| তিনি লোকদের আমার অধীনে এনে দিয়েছেন| 48 প্রভু, আপনি শত্রুর হাত থেকে আমায় বাঁচিয়েছেন| যারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল, তাদের পরাস্ত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন| নিষ্ঠুর মানুষের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন| 49 হে প্রভু, এই কারণে আমি সকল জাতির কাছে আপনার প্রশংসা করি| এই জন্যই আপনার নামে আমি স্তোত্র গান করি| 50 প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে বহু যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করেন! তাঁর মনোনীত রাজার প্রতি তিনি প্রকৃত ভালোবাসা দেখান| তিনি দায়ূদ এবং তাঁর উত্তরপুরুষদের প্রতি চিরদিন বিশ্বস্ত থাকবেন!
1 আকাশমণ্ডল ঈশ্বরের মহিমা বর্ণনা করে| বিতান তাঁর হাতের তৈরী শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির কথা ঘোষণা করে| 2 প্রতিটি নতুন দিন, ঈশ্বরের মহত্ত্বের কথা বলে| প্রতিটি রাত্রি ঘোরতরভাবে ঈশ্বরের জ্ঞান প্রকাশ করে| 3 প্রকৃতপক্ষে তুমি কোন কথা বা শব্দ শুনতে পাবে না| আমাদের কানে শোনার মত কোন শব্দ তারা সৃষ্টি করে না| 4 কিন্তু তাদের “রব” সারা পৃথিবী পরিব্যপ্ত করে রাখে| তাদের “শব্দসকল” পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্য়ন্ত পৌঁছায| সূর্য়্য়ের কাছে আকাশ একটি বাড়ির মত| 5 সকালের সূর্য় বাসরঘর থেকে পরিতৃপ্ত বরের মত বেরিয়ে আসে| সূর্য়্য় হচ্ছে একজন দৌড়বাজের মত| আকাশের এপার থেকে ওপার পর্য়ন্ত তার দৌড়ের প্রতিয়োগিতায দৌড়বার জন্য উদগ্রীব| 6 সূর্য়্য় আকাশের এক দিক থেকে দৌড় শুরু করে এবং সারা রাস্তা দৌড়ে দৌড়ে আকাশের অন্য প্রান্তে গিয়ে দৌড় শেষ করে| তার তাপ থেকে কিছুই লুকিয়ে থাকতে পারে না| প্রভুর শিক্ষাগুলিও ঠিক এই রকম| 7 প্রভুর শিক্ষামালা হচ্ছে নিখুঁত| সেগুলি ঈশ্বরের লোকদের শক্তি দেয়| প্রভুর সাক্ষ্য বিশ্বাসয়োগ্য| তা অজ্ঞ মানুষকে জ্ঞানী হতে সাহায্য করে| 8 প্রভুর সকল বিধি যথায়থ| সেগুলি মানুষকে সুখী করে| প্রভুর আজ্ঞাগুলিও উত্তম| সেগুলি মানুষকে বাঁচার যথার্থ পথ দেখায়| 9 প্রভুর উপাসনা সেই আলোর মত, যার দীপ্তি চিরদিন ভাস্বর| প্রভুর সিদ্ধান্তগুলি ভাল এবং ন্যায়সঙ্গত| 10 প্রভুর শিক্ষামালা সব থেকে খাঁটি সোনার চেয়েও মূল্যবান| তা শ্রেষ্ঠ মধু, যা মৌচাক থেকে সরাসরি পাওয়া যায় তার থেকেও মিষ্টি| 11 প্রভুর শিক্ষামালা তাঁর দাসকে সতর্ক করে| সেগুলি পালন করলে মহাফল হয়| 12 প্রভু, কোন ব্যক্তিই তার নিজের সব দোষ দেখতে পায় না| তাই হে প্রভু, গোপনে পাপ করা থেকে আমায় বিরত করুন| 13 আমার য়ে সব পাপ করতে ইচ্ছা হয়, সেগুলো আমায় করতে দেবেন না| ঐ পাপগুলিকে আমার ওপর প্রভুত্ব করতে দেবেন না| আপনি যদি আমায় সাহায্য করেন, তবে আমি পাপমুক্ত ও শুচি থাকবো| 14 আমার বাক্য এবং চিন্তাসমূহ আপনাকে প্রসন্ন করুক| হে প্রভু, আপনিই আমার শিলা| আপনিই সেই জন যিনি আমার রক্ষা করেন|
1 যখন তুমি সংকটের মধ্যে থাকো, তখন প্রভু য়েন তোমার ডাকে সাড়া দেন| যাকোবের ঈশ্বর তোমায় সেগুলো অতিক্রম করতে সাহায্য করুন| 2 ঈশ্বর তাঁর পবিত্রস্থান থেকে তোমায় সাহায্য করুন| সিয়োন পর্বত থেকে তিনি য়েন তোমায় সাহায্য করেন| 3 তোমার দেওয়া সকল উত্সর্গ ঈশ্বর স্মরণে রাখুন| তোমার দেওয়া সকল নৈবেদ্য য়েন তিনি গ্রহণ করেন| 4 তুমি যা চাও, ঈশ্বর য়েন তাই মঞ্জুর করেন| তিনি য়েন, তোমার সব পরিকল্পনা সফল করেন| 5 ঈশ্বর যখন তোমাকে সাহায্য করেন তখন আমরা আনন্দ করব| এস, আমরা তাঁর নামের প্রশংসা করি| তুমি যা চাও প্রভু য়েন তোমাকে তার সব কিছুই দেন! 6 এখন আমি জেনেছি, প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে সাহায্য করেন! প্রভু তাঁর পবিত্র স্বর্গলোকে বিরাজিত ছিলেন এবং তাঁর মনোনীত রাজাকে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন| 7 কিছু লোক তাদের রথের ওপর নির্ভর করেছিল| কিছু লোক তাদের সৈন্যদের ওপর নির্ভর করেছিল| কিন্তু আমরা স্মরণে রেখেছিলাম আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে| 8 সেই সব লোকগুলো পরাজিত হয়েছে, তারা যুদ্ধে মারা গেছে| কিন্তু আমরা জিতেছি! আমরা বিজয়ী হয়েছি! 9 প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে রক্ষা করেছেন! ঈশ্বরের মনোনীত রাজা সাহায্য চাইলো| প্রভু তার উত্তর দিলেন!
1 প্রভু, আপনার শক্তি রাজাকে সুখী রাখে| আপনি যখন তাকে রক্ষা করেন তখন সে অত্যন্ত খুশী হয়| 2 রাজা যা যা চেয়েছিল, আপনি তাকে তাই দিয়েছেন| প্রভু, রাজা কিছু চেয়েছিল এবং আপনি তাকে ঠিক তাই দিয়েছেন সে যা চেয়েছিল| 3 প্রভু, সত্যিই আপনি রাজাকে আশীর্বাদ করেছেন| আপনিই তার মাথায় সোনার মুকুট পরিযে দিয়েছেন| 4 ঈশ্বর, রাজা আপনার কাছে জীবন চেয়েছিলো, আপনি তাকে তাই দিয়েছেন! আপনি তাকে দীর্ঘ জীবন দিয়েছেন, যা য়ুগ য়ুগ ধরে চলছে| 5 আপনি রাজাকে জয়ের পথে পরিচালিত করেছেন এবং তাকে মহান গৌরব এনে দিয়েছেন| আপনি তাকে সম্মান এবং প্রশংসা দিয়েছেন| 6 ঈশ্বর, সত্যিই আপনি রাজাকে চিরদিনের জন্য আশীর্বাদ করেছেন| যখন রাজা আপনার মুখ দর্শন করে, তখন সে ভীষণ খুশী হয়| 7 রাজা প্রভুর ওপর আস্থা রাখে| হে পরাত্পর, তাকে হতাশ করবেন না| 8 হে ঈশ্বর, আপনি আপনার শত্রুদের দেখাবেন য়ে আপনি শক্তিমান| যারা আপনাকে ঘৃণা করে, আপনার শক্তি তাদের পরাজিত করবে| 9 হে প্রভু, আপনি যখন রাজার সঙ্গে থাকেন, তখন সে একটা জ্বলন্ত চুল্লির মত যা সব কিছুকেই পুড়িয়ে দেয়| তার ক্রোধ লেলিহান আগুনের মত জ্বলতে থাকে এবং সে শত্রুদের বিনাশ করে| 10 আর তার শত্রুদের পরিবারসমূহ ধ্বংস হয়ে যাবে| তারা এই পৃথিবী থেকে সরে যাবে| 11 কেন? কারণ ঐসব লোক প্রভু, আপনার বিরুদ্ধে খারাপ কাজের ফন্দি এঁটেছিল কিন্তু তারা সফল হতে পারে নি| 12 প্রভু, ঐসব লোককে আপনি আপনার ক্রীতদাস করে রেখেছেন| আপনি ওদের একসঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধেছেন| আপনি ওদের গলায দড়ি পরিযেছেন| আপনি ওদের ক্রীতদাসের মত মাথা নত করিয়েছেন| 13 প্রভু, আমরা আপনার মহত্বের গৌরব-গাথা গাইবো! হে প্রভু, আপনার বিরাটত্বে আপনি মহিমান্বিত হউন!
1 হে আমার ঈশ্বর, হে আমার ঈশ্বর! কেন আপনি আমায় ছেড়ে চলে গেছেন? আপনি এত দূরে য়ে, আমাকে রক্ষা করতে পারবেন না! আপনি এত দূরে য়ে, আমার সাহায্যের জন্য চিত্কার ও শুনতে পাবেন না! 2 ঈশ্বর আমার, সারাদিন ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি| কিন্তু আপনি সাড়া দেন নি| সারারাত ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি| 3 ঈশ্বর, আপনি হলেন সেই পবিত্র একজন| আপনি রাজার মত থেকে যান| ইস্রায়েলের প্রশংসাই আপনার সিংহাসন| 4 আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন| হ্যাঁ, হে ঈশ্বর তাঁরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন এবং আপনি তাঁদের রক্ষা করেছেন| 5 ঈশ্বর, আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়েছিলেন এবং তাঁরা তাঁদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন| তাঁরা আপনার ওপর আস্থা রেখেছিলেন এবং তাই তাঁরা আশাহত হন নি! 6 সুতরাং, আমি কি কীট, মানুষ নই? লোকে আমার সম্পর্কে লজ্জা বোধ করে এবং আমাকে ঘৃণা করে| 7 প্রত্যেকে যারা আমাকে দেখে, আমায় নিয়ে ঠাট্টা করে| তারা তাদের মাথা নাড়ায এবং আমায় জিভ ভেঙ্গায| 8 তারা আমায় বলে: “প্রভুর কাছে সাহায্য চাও| হয়তো বা তিনি তোমার পরিত্রাণ করবেন| তিনি যদি সত্যিই তোমায় পছন্দ করেন, নিশ্চয়ই তিনি তোমায় উদ্ধার করবেন!” 9 হে ঈশ্বর, এটাই প্রকৃত সত্য য়ে, একমাত্র আপনার ওপরেই আমি নির্ভর করি| এমন কি আমি যখন আমার মাযের বুকের দুধ খেতাম আপনি আমাকে আশ্বাস এবং স্বস্তি দিতেন| 10 য়ে দিন আমি জন্মেছি, সে দিন থেকেই আপনি আমার ঈশ্বর| মাযের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পরেই আমি আপনার যত্নে লালিত হয়েছি| 11 তাই, হে আমার ঈশ্বর, আমাকে ছেড়ে যাবেন না! কারণ সংকট নিকটবর্ত্তী| আমাকে সাহায্য করার মত কেউই নেই| 12 আমার চারপাশে লোকজন রয়েছে, শক্তিশালী বলদের মত তারা আমার চারদিকে ঘিরে রয়েছে| 13 তাদের মুখগুলো একটা গর্জনকারী সিংহের মত হাঁ করে খোলা, য়েন তার শিকারের দিকে সবেগে ছুটে যাচ্ছে| 14 মাটিতে ফেলে দেওয়া জলের মত আমার শক্তি চলে গেছে| আমার অস্থিগুলো আলাদা হয়ে গেছে| আমি আমার সাহস হারিযে ফেলেছি! 15 আমার শক্তিভাঙ্গা মৃত্ পাত্রের মতই শুকিয়ে গেছে| আমার জিভ তালুতে আটকে যাচ্ছে| আপনি আমাকে “মৃত্যুর ধূলায” পৌঁছে দিয়েছেন| 16 আমার চারপাশে “কুকুর” ঘুরে বেড়াচ্ছে| সেই সব মন্দ লোকেদের দল আমাকে ফাঁদে ফেলেছে| সিংহের মত তারা আমার হাত ও পা বিদ্ধ করে দিয়েছে| 17 আমি আমার হাড়গুলো পর্য়ন্ত দেখতে পাচ্ছি| লোকজন আমার দিকে চেয়ে রয়েছে! তারা ক্রুর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিযে আছে! 18 ঐ লোকগুলো ওদের মধ্যে আমার কাপড়গুলো ভাগাভাগি করে নিচ্ছে| তারা আমার কাপড়ের জন্য ঘুঁটি চালছে| 19 প্রভু, আমাকে ছেড়ে যাবেন না! আপনিই আমার শক্তি| শীঘ্রই আমাকে সাহায্য করুন! 20 প্রভু, শত্রুর তরবারি হতে আমায় রক্ষা করুন| ওই সব কুকুরদের হাত থেকে আমার মূল্যবান জীবন রক্ষা করুন| 21 আমাকে সিংহের মুখ থেকে রক্ষা করুন| বলদের শিং এর আঘাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| 22 প্রভু, আপনার সম্পর্কে আমি আমার ভাইদের বলবো| মহাসমাজের সামনে আমি আপনার প্রশংসা করব| 23 তোমরা যারা প্রভুর উপাসনা কর, তারা প্রভুর প্রশংসা কর! হে ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষগণ প্রভুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর! হে ইস্রায়েলের মানুষ প্রভুকে ভয় ও শ্রদ্ধা কর| 24 কেন? কারণ প্রভু দরিদ্র লোকদের তাদের সংকটে সাহায্য করেন| প্রভু তাদের জন্য লজ্জিত নন| যদি মানুষ তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে তিনি তাদের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকেন না| 25 প্রভু, মহাসমাজে আমার প্রশংসা আপনার কাছ থেকেই আসে| এইসব উপাসনাকারী ভক্তদের সামনে, আমার মানত করা বলি আমি আপনাকে উত্সর্গ করবো| 26 দরিদ্র লোকরা খেয়ে তৃপ্ত হবে| তোমরা যারা প্রভুকে খুঁজছ, তারা তাঁর প্রশংসা কর! তোমাদের অন্তঃকরণ চিরজীবি হউক! 27 তোমরা, সুদূর দেশগুলির জনগণ, প্রভুকে মনে রেখো এবং তাঁর কাছে ফিরে এস! য়ে সব মানুষ বিদেশে থাকে তারাও য়েন প্রভুরই উপাসনা করে| 28 কেন? কারণ প্রভুই রাজা| তিনি সব জাতিকে শাসন করেন| 29 বলিষ্ঠ এবং সুদেহী লোকেরা আহারান্তে ঈশ্বরের কাছে প্রণিপাত করবে| বস্তুতঃ সকলে যারা মারা যাবে এবং যারা ইতিমধ্যেই মারা গেছে তারা সকলেই ঈশ্বরের কাছে অবনত হবে! 30 এবং ভবিষ্যতে আমাদের উত্তরপুরুষরা প্রভুর সেবা করবে| লোকে চিরদিন তাঁর কথা বলবে| 31 প্রত্যেকটি প্রজন্ম তাদের শিশুদের কাছে ঈশ্বর য়ে ভাল জিনিসগুলি করেছেন সে সম্পর্কে বলবে|
1 প্রভুই আমার মেষপালক| আমার যা কিছু চাই, সবসময় আমি তা-ই নেব| 2 তিনি আমাকে সবুজ চারণ ক্ষেত্রে শুইযে দেন| তিনি আমাকে বিশ্রাম জলাধারের পাশে পরিচালিত করেন| 3 তাঁর নামের মহিমা উপলদ্ধি করার জন্য তিনি আমার আত্মাকে নতুন শক্তি দেন| তাঁর নামের জন্য তিনি আমায় ঠিক পথে পরিচালিত করেন| 4 এমনকি, যদি আমি কবরের মত গাঢ় অন্ধকারময় কোন উপত্যকা দিয়ে হেঁটে যাই, আমি কোন বিপদের দ্বারা ভীত হব না| কেন? কারণ আপনি য়ে আমার সঙ্গে রয়েছেন প্রভু| আপনার শাসনদণ্ড আমাকে স্বস্তি দেয়, নিরাপদে রাখে| 5 প্রভু, আপনি আমার শত্রুদের সামনে আমার টেবিল তৈরী করেছিলেন| আপনি আমার মাথায় তেল দিয়ে আমাকে অভিবাদন করেছিলেন| আমার পানপাত্র পরিপূর্ণ এবং তা উপচে পড়ছে| 6 ধার্ম্মিকতা এবং ক্ষমা আজীবন আমার সঙ্গে থাকবে| এবং আমি প্রভুর মন্দিরে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকবো|
1 এই পৃথিবী এবং পৃথিবীর সমস্ত কিছুই প্রভুর| এই জগত্ এবং জগতের সব লোকও তাঁর| 2 প্রভু জলের ওপর এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন| তিনি নদীসমূহের ওপর এই সব তৈরী করেছেন| 3 কে প্রভুর পর্বতে আরোহণ করতে পারে? কে প্রভুর পবিত্র মন্দিরে গিয়ে দাঁড়াতে পারে? 4 সেই সব লোক যারা মন্দ কাজ করে নি, সেই সব লোক যাদের অন্তঃকরণ শুচি, সেই সব লোকরা যারা মিথ্যেকে সত্যের মত করে বলবার সময় আমার নাম নেয নি, যারা মিথ্যা কথা বলে নি এবং মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয় নি একমাত্র সেই সব লোকই এখানে উপাসনা করতে পারে| 5 ভালো লোকরা প্রভুকে অন্যদের আশীর্বাদ করবার জন্য বলে| ঐসব ভালো লোকরাও ঈশ্বর, তাদের পরিত্রাতাকে ভাল কাজই করতে বলে| 6 সেই সব ভালো লোক ঈশ্বরকে অনুসরণ করার চেষ্টা করে| তারা সাহায্যের জন্য যাকোবের ঈশ্বরের কাছে যায়| 7 হে ফটক সকল, তোমাদের মাথা তোল! হে প্রাচীন দ্বারসমূহ, খুলে যাও, কারণ মহিমান্বিত রাজা ভেতরে আসবেন| 8 কে সেই মহিমান্বিত রাজা? প্রভুই সেই রাজা| তিনিই পরাক্রমী সৈনিক| প্রভুই সেই রাজা, তিনিই যুদ্ধের নাযক| 9 হে ফটক সকল তোমাদের মাথা তোল! হে প্রাচীন প্রবেশ দ্বারসমূহ, খুলে যাও, কারণ মহিমান্বিত রাজা ভেতরে আসবেন| 10 কে সেই মহিমান্বিত রাজা? সর্বশক্তিমান প্রভুই সেই রাজা| তিনিই সেই মহিমান্বিত রাজা!
1 প্রভু, আমি নিজেকে আপনার হাতে সমর্পণ করেছি| 2 হে আমার ঈশ্বর, আমি আপনাতে আস্থা রাখি| তাই আমাকে লজ্জিত করবেন না| আমার শত্রুরা য়েন আমার ওপর জয়লাভ না করে| 3 যদি কোন ব্যক্তি আপনার ওপর নির্ভর করে, সে কখনও হতাশাগ্রস্থ হবে না| কিন্তু বিশ্বাসঘাতকরা হতাশ হবে| তারা কিছুই পাবে না| 4 হে প্রভু, আপনার পথগুলি আমাকে দেখান| আপনার পথ সম্পর্কে আমায় শিক্ষা দিন| 5 আমায় পরিচালিত করুন এবং আপনার সত্য সম্পর্কে আমায় শিক্ষা দিন| আপনিই আমার ঈশ্বর, আমার পরিত্রাতা| প্রতিদিন আমি আপনার ওপর নির্ভর করি| 6 হে প্রভু, আমার প্রতি দয়া করে আমায় স্মরণ করবেন| য়ে কোমল ভালোবাসা আপনি আমায় চিরদিন দিয়ে এসেছেন সেই ভালোবাসা আমার প্রতি প্রদর্শন করুন| 7 আমার তরুণ বযসের কৃত কুকর্ম ও পাপ আপনি স্মরণে রাখবেন না| হে প্রভু, আপনার সুনামের জন্য, আমায় ভালোবেসে স্মরণ করবেন| 8 প্রভু প্রকৃতপক্ষেই ভাল এবং সত্| তিনি পাপীদের ঠিক পথে জীবনযাপন করবার শিক্ষা দেন| 9 যারা বিনীত, তাদেরই তিনি তাঁর পথগুলি শেখান| তিনি ন্যায়পথে তাদের পরিচালিত করেন| 10 প্রভুই রাজা, যারা তাঁর চুক্তি এবং প্রতিশ্রুতি অনুসরণ করে তিনি তাদের প্রতি সত্যনিষ্ঠ হন| 11 হে প্রভু, আমি অনেক পাপ কাজ করেছি| কিন্তু আপনার মহত্ব দেখাবার জন্য, আমি যা যা করেছিলাম, সেগুলো সবই আপনি ক্ষমা করেছেন| 12 যদি কোন লোক প্রভুকেই অনুসরণ করবে বলে মনোনীত করে, তাহলে ঈশ্বর তাকে বেঁচে থাকবার শ্রেষ্ঠ রাস্তা দেখাবেন| 13 সেই লোক ভাল জিনিস উপভোগ করতে পারবে, এবং তাঁর সন্তানরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূখণ্ড পাবে| 14 প্রভু তাঁর গূঢ় কথা তাঁর অনুগামীদের বলেন| তাঁর চুক্তি সম্পর্কে তিনি তাদের শিক্ষা দেন| 15 সাহায্যের জন্য আমি সর্বদাই প্রভুর দিকে চেয়ে থাকি| তিনি সর্বদাই আমাকে সমস্যার জাল থেকে মুক্ত করেন| 16 হে প্রভু, আমি নিঃসহায় এবং নিঃসঙ্গ| আমার দিকে মুখ ফেরান, আমায় কৃপা করুন| 17 আমাকে আমার সংকটসমূহ থেকে মুক্ত করুন| আমার সমস্যাগুলির সমাধান করতে আমায় সাহায্য করুন| 18 আমার প্রচেষ্টা ও সমস্যার দিকে দৃষ্টিপাত করুন| আমার সকল পাপ থেকে আমায় ক্ষমা করে দিন| 19 আমার য়েসব শত্রু আছে তাদের দিকে দেখুন| তারা আমায় ঘৃণা করে, আমায় আঘাত করতে চায়| 20 হে ঈশ্বর, আমায় রক্ষা করুন এবং আমায় উদ্ধার করুন| আমি আপনার ওপর নির্ভর করি| দয়া করে আমায় হতাশ করবেন না| 21 হে ঈশ্বর, আপনি প্রকৃতই ভাল| আমি আপনাতে নির্ভর করি, তাই আমায় রক্ষা করুন| 22 হে ঈশ্বর, ইস্রায়েলের লোকদের, তাদের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করুন|
1 প্রভু, আমার বিচার করুন| আমি য়ে সত্ পথে জীবনযাপন করেছি তা প্রমাণ করে দিন| আমি কখনও প্রভুতে আস্থা রাখা থেকে বিরত হই নি| 2 প্রভু আমায় পরীক্ষা করুন, আমার হৃদয় ও মনকে খুব ভালোভাবে দেখুন| 3 আমি সর্বদাই আপনার কোমল ভালোবাসা দেখতে পাই| আপনার সত্যে আমি বাঁচি| 4 আমি মিথ্যাবাদী ও কপটাচারীদের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করি না| আমি ঐসব অকেজো লোকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হই না| 5 ঐসব অপরাধীদের দলগুলিকে আমি ঘৃণা করি| ঐসব শযতানদের দলে আমি য়োগ দেবো না| 6 হে প্রভু আমি য়ে নিস্পাপ তা দেখাতে এবং আপনার য়জ্ঞবেদীতে যাওয়ার জন্য আমি আমার হাত ধুই| 7 প্রভু আমি আপনার প্রশংসা গান গাই| আপনার সৃষ্টিকরা আশ্চর্য়্য় বিষয় সম্পর্কে আমি গান গাই| 8 প্রভু আমি আপনার মন্দিরকে ভালোবাসি| আমি আপনার মহিমাময় তাঁবু ভালোবাসি| 9 প্রভু আমাকে ঐসব পাপীদের দলভুক্ত করবেন না| ঐসব খুনীদের সঙ্গে আমার জীবন গ্রহণ করবেন না| 10 ঐ লোকগুলো সব সময় অন্যদের প্রতারিত করে| খারাপ কাজ করার জন্য ওরা সর্বদাই উত্কোচ নিতে প্রস্তুত| 11 কিন্তু আমি নির্দোষ| তাই হে ঈশ্বর, আমার প্রতি সদয় হোন এবং আমায় রক্ষা করুন| 12 সব বিপদ থেকে আমি সুরক্ষিত| হে প্রভু, আমি আপনার মণ্ডলীগণের সামনে আপনার প্রশংসা করি|
1 প্রভু, আপনিই আমার জ্যোতি এবং আমার পরিত্রাতা| আমি কাউকেই ভয় পাবো না! প্রভুই আমার জীবনের সুরক্ষা স্থান, তাই কোন লোককেই আমি ভয় পাবো না| 2 মন্দ লোকেরা আমায় আক্রমণ করতে পারে এবং আমার শত্রুরা আমায় ধ্বংস করবার চেষ্টা করতে পারে, তখন তারা হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে| 3 যদি একদল সৈন্যও আমার চারদিকে ঘিরে থাকে, আমি ভয় করবো না| এমনকি যুদ্ধে যদি লোকজন আমায় আক্রমণ করে, আমি ভয় করবো না| কেন? কারণ আমি প্রভুকে বিশ্বাস করি| 4 প্রভুর কাছ থেকে আমি কেবলমাত্র একটা জিনিসই চাইবো: “আমাকে সারাজীবন মন্দিরে তাঁর সৌন্দর্য়্য় দেখবার জন্য এবং তাঁকে সাক্ষাত্ করবার জন্য প্রভুর মন্দিরে বসে থাকতে দিন|” 5 যখন আমি বিপদগ্রস্থ তখন প্রভুই আমায় রক্ষা করবেন| তাঁর তাঁবুতেই তিনি আমায় লুকিয়ে রাখবেন| তিনি আমাকে তাঁর নিরাপদ আশ্রয়ে তুলে নেবেন| 6 আমার শত্রুরা আমায় ঘিরে রয়েছে| কিন্তু ওদের পরাজিত করতে প্রভু আমায় সাহায্য করবেন! তারপর আমি তাঁর তাঁবুতে বলি উত্সর্গ করবো| আনন্দধ্বনি করে আমি উত্সর্গ নিবেদন করব| প্রভুর সম্মানে আমি গান-বাজনা করবো| 7 প্রভু আমার কথা শুনুন| আমায় উত্তর দিন| আমার প্রতি সদয় হোন| 8 প্রভু, আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই| আমার অন্তর থেকে আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই| আপনার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমি আপনার সামনে এসেছি| 9 প্রভু, আপনার দাস আমি, আমার দিক থেকে আপনি মুখ ফিরিয়ে নেবেন না| আমায় সাহায্য করুন! আমায় সরিয়ে দেবেন না! আমায় ফেলে চলে যাবেন না! ঈশ্বর আমার, আপনিই আমার পরিত্রাতা| 10 আমার মা বাবা আমায় ছেড়ে চলে গেছেন| কিন্তু প্রভু আমায় গ্রহণ করেছেন| তিনি আমায় তাঁর আপনজন করে নিয়েছেন| 11 প্রভু আমার প্রচুর শত্রু আছে| তাই আপনার পথ আমায় শেখান| আমায় সঠিক কাজ করতে শেখান| 12 প্রভু, আমার বিরোধী পক্ষকে আমায় পরাজিত করতে দেবেন না| কারণ মিথ্যে সাক্ষীরা আদালতে আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছে| আমার বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্য়্য়কলাপ উদ্রেক করবার জন্য তারা এটা করেছিল| 13 আমি প্রকৃতই বিশ্বাস করি য়ে, আমার মৃত্যুর পূর্বেআমি প্রভুর ধার্মিকতা দেখে যাবো| 14 প্রভুর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা কর| শক্তিমান ও সাহসী হও এবং প্রভুর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা কর!
1 হে প্রভু, আপনি আমার শিলা| আপনার সাহায্যের জন্য আমি আপনাকে ডাকছি| আমার প্রার্থনা থেকে কান ফিরিয়ে নেবেন না| যদি আপনি আমার ডাকে সাড়া না দেন, লোকে ভাববে আমি কবরের মৃত ব্যক্তির চেয়ে উন্নত কিছু নই| 2 প্রভু, আমার দু হাত তুলে আপনার পবিত্রতম স্থানে আমি প্রার্থনা জানাই| যখন আমি আপনাকে ডাকি আমার ডাক শুনুন| আমার প্রতি কৃপা প্রদর্শন করুন| 3 প্রভু, আমাকে খারাপ লোকদের একজন ভাববেন না| সেই সব লোক “সলোম” শব্দের দ্বারা তাদের প্রতিবেশীদের অভিনন্দন করে| কিন্তু মনে মনে তারা প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে মন্দ ফন্দি আঁটে| 4 প্রভু, ঐসব লোক অন্যান্য লোকদের প্রতি মন্দ আচরণ করে| অতএব তাদের যাতে খারাপ হয় তাই করুন| য়েমন ওরা অন্যদের করেছিল| 5 মন্দ লোকরা কখনই প্রভুর ভালো কাজগুলো বুঝতে পারে না| প্রভু য়ে সব ভালো কাজ করেন তা তারা দেখে না| না তারা বুঝতে চায় না, তারা শুধু ধ্বংস করতে চায়| 6 প্রভুর প্রশংসা কর! তিনি আমার প্রতি করুণা করার প্রার্থনা শুনেছেন! 7 প্রভুই আমার শক্তি, তিনিই আমার ঢাল| আমি তাঁকে বিশ্বাস করেছি| তিনি আমায় সাহায্য করেছেন| আমি প্রচণ্ড খুশী! এবং তাই আমি তাঁর প্রশংসা করে গান গাইছি| 8 প্রভু যাকে পছন্দ করেন তাঁকে রক্ষা করেন| প্রভুই তাঁর শক্তি! 9 ঈশ্বর আপনার লোকদের রক্ষা করেন| আপনার অধিকারভুক্ত যারা তাদের আশীর্বাদ করুন| তাদের আপনি চিরকালের জন্য নেতৃত্ব দিন এবং তাদের সম্মান দিন!
1 হে ঈশ্বরের সন্তানরা, তোমরা প্রভুর প্রশংসা কর! তাঁর শক্তি এবং মহিমার প্রশংসা কর| 2 প্রভুর প্রশংসা কর এবং তাঁর নামের সম্মান কর! তোমরা পবিত্র বস্ত্র পরে তাঁর উপাসনা কর| 3 প্রভুর রব সমুদ্রের এপার থেকে ওপারে শোনা যায়| মহিমান্বিত ঈশ্বরের রব মহাসমুদ্রের বজ্রধ্বনির মত| 4 প্রভুর রব তাঁর শক্তি ঘোষণা করে| প্রভুর রব তাঁর মহিমা প্রকাশ করে| 5 প্রভুর রব বিরাট বড় এরস গাছদের ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দেয়| প্রভু লিবানোনের এরস গাছ ভেঙ্গে দিয়েছেন| 6 প্রভু লিবানোনকে প্রকম্পিত করেছেন| দেখে মনে হয় য়েন একটি বাচ্চা বাছুর নাচছে| শিরিযোণপ্রকম্পিত হচ্ছে| দেখে মনে হয় য়েন একটা বাচ্চা ছাগল লাফাচ্ছে| 7 বিদ্যুতের চমক দিয়ে প্রভুর রব বাতাসকে কেটে কেটে দিচ্ছে| 8 প্রভুর রব মরুভূমিকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে| প্রভুর রবে কাদেশ মরুভূমি কেঁপে উঠছে| 9 প্রভুর রব দেবদারু গাছকে কাঁপিয়ে দেয়| প্রভু বনস্থলী ধ্বংস করেন| কিন্তু তাঁর পবিত্র মন্দিরে, লোকে তাঁর মহিমার গান গায| 10 প্লাবনের সময় প্রভুই ছিলেন রাজা এবং চিরদিনের জন্য প্রভুই রাজা থাকবেন| 11 প্রভু তাঁর লোকদের শক্তি দেন| তিনি তাঁর লোকেদের শান্তি দিয়ে আশীর্বাদ করেন|
1 প্রভু, আপনি আমায় আমার সংকটগুলি থেকে টেনে তুলেছেন| আপনি আমাকে আমার শত্রুদের হাতে পরাজিত হতে এবং বিদ্রূপ করতেও দেন নি| তাই আপনার প্রতি আমি সম্মান দেখাবো| 2 প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম| এবং আমার প্রার্থনা শুনে আপনি আমায় আরোগ্য করে তুলেছেন| 3 আপনি আমায় কবর থেকে টেনে তুলেছেন| আপনি আমায় বাঁচতে দিয়েছেন| মৃত্যু লোকের মৃত মানুষদের সঙ্গে আমাকে থাকতে হয় নি| 4 ঈশ্বরের অনুগামীরা, প্রভুর প্রতি স্তবগান কর| তাঁর পবিত্র নামের প্রশংসা কর! 5 যখন ঈশ্বর ক্রুদ্ধ ছিলেন তখন “মৃত্যু” ছিল তাঁর সিদ্ধান্ত| কিন্তু তিনি আমার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে আমাকে দিয়েছেন “জীবন|” রাত্রে আমি লুটিযে পড়ে কাঁদি| পরদিন সকালে আমি আনন্দে গান গাই! 6 যখন নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে ছিলাম আমি ভেবেছিলাম কিছুই আমাকে আঘাত করতে পারবে না! 7 হ্যাঁ, প্রভু যখন আপনি আমার প্রতি সদয় ছিলেন আমি অনুভব করেছিলাম কোন কিছুই আমাকে হারাতে পারবে না! কিন্তু যখন আপনি মুখ ঘুরিযে নিলেন আমি ভয়ে কাঁপতে লাগলাম| 8 তাই, হে ঈশ্বর আমি ফিরে এসে আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি| আমি আপনার কাছে করুণা প্রার্থনা করেছি| 9 আমি বলেছিলাম, “হে ঈশ্বর, যদি আমি মরে কবরে যাই, তাতে কি ভালো হবে? মৃত লোকরা শুধুই ধূলোয় শুয়ে থাকে! তারা আপনার প্রশংসা করে না| আমরা য়ে আপনার ওপর কতখানি নির্ভর করতে পারি, তা তারা অন্যান্য লোদের বলে না| 10 প্রভু আমার প্রার্থনা শুনুন এবং আমার প্রতি সদয় হোন! প্রভু আমায় সাহায্য করুন! 11 আমি প্রার্থনা করেছিলাম এবং আপনি আমায় সাহায্য করেছেন! আপনি আমার কান্নাকে নৃত্যে পরিণত করেছেন| আপনি আমায় চটের বস্ত্র সরিয়ে দিয়ে আনন্দ দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন| 12 প্রভু আমার ঈশ্বর, আমি চিরদিন আপনার প্রশংসা করবো, তাই কখনই নীরবতা থাকবে না| সর্বদাই কোন একজন থাকবে, য়ে আপনার সম্মানের জন্য আপনার প্রশংসা গীত গাইবে| 13
1 প্রভু, আমি আপনার ওপর নির্ভর করি| আমাকে হতাশ করবেন না| আমার প্রতি সদয় হোন এবং আমায় রক্ষা করুন| 2 হে ঈশ্বর, আমার কথা শুনুন| শীঘ্রই আপনি এসে আমায় রক্ষা করুন| আপনি আমার নিরাপদ আশ্রয় হোন| আপনি আমার নিরাপদ দুর্গ হোন| আমায় সুরক্ষিত করুন! 3 ঈশ্বর, আপনিই আমার শিলা; তাই, আপনার নামের স্বার্থে আমায় পরিচালিত করুন| 4 আমার শত্রুরা আমার সামনে এক ফাঁদ পেতে রেখেছে| ওদের ফাঁদ থেকে আমায় উদ্ধার করুন| আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়| 5 প্রভু, আপনিই সেই ঈশ্বর যাকে আমরা বিশ্বাস করতে পারি| আমার জীবন আমি আপনার হাতে সমর্পণ করলাম| আমায় উদ্ধার করুন! 6 যারা মূর্ত্তিসমূহের পূজা করে, তাদের আমি ঘৃণা করি| আমি একমাত্র প্রভুকেই বিশ্বাস করি| 7 হে ঈশ্বর, আপনার করুণায আমি খুব খুশী| আপনি আমার দুর্ভোগ দেখেছেন| আমার য়ে সব সমস্যা ছিল তাও আপনি জানেন| 8 আপনি আমাকে আমার শত্রুদের হস্তগত করবেন না| ওদের ফাঁদ থেকে আপনি আমায় মুক্ত করবেন| 9 প্রভু, আমার অসংখ্য সমস্যা আছে| তাই আমার প্রতি সদয় হন| আমি মানসিকভাবে এমন বিপর্য়স্ত য়ে কেঁদে কেঁদে আমার চোখ ব্যথা করছে| আমার গলা ও পেট জ্বালা করছে| 10 আমার জীবন দুঃখে শেষ হতে চলেছে| দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে আমার বছরগুলি কাটছে| আমার সংকটগুলি আমার সব শক্তিকে কেড়ে নিচ্ছে| আমার সব শক্তি, আমায় ত্যাগ করছে| 11 শত্রুরা আমায় ঘৃণা করছে| আমার প্রতিবেশীরাও আমায় ঘৃণা করছে| সমস্ত আত্মীয়রা আমার সঙ্গে রাস্তায় দেখা করে| তারা আমাকে ভয় পায় এবং এড়িয়ে চলে| 12 হারিযে যাওয়া যন্ত্রপাতির মত লোকরা আমাকে ভুলে গেছে| 13 লোকরা আমার সম্পর্কে য়ে সব ভয়ঙ্কর কথা বলে, তা আমি শুনি| ঐসব লোক আমার বিরুদ্ধে গেছে| ওরা আমায় মেরে ফেলার চক্রান্ত করেছে| 14 হে প্রভু, আমি আপনাতে আস্থা রাখি| আপনিই আমার ঈশ্বর| 15 আমার জীবন আপনার হাতে রয়েছে| আমার শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| কিছু লোক আমায় তাড়া করছে| ওদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| 16 দয়া করে আপনার দাসকে অভ্য়র্থনা করুন এবং গ্রহণ করুন| আমার প্রতি সদয় হোন এবং আমাকে রক্ষা করুন! 17 প্রভু, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি, তাই আমি হতাশ হবো না, মন্দ লোকেরা হতাশ হবে| ওরা নীরবে কবরে যাবে| 18 ঐসব মন্দ লোক নিজেদের সম্পর্কে বড়াই করে এবং সত্ লোকেদের সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে| ঐসব মন্দ লোকেরা প্রচণ্ড উদ্ধত| কিন্তু য়ে মুখ দিয়ে ওরা মিথ্যা কথা বলে তা নীরব হয়ে যাবে| 19 হে ঈশ্বর, আপনার অনুগামীদের জন্য আপনি অনেক ভালো জিনিষ বাঁচিয়ে রেখেছেন| যারা আপনাকে বিশ্বাস করে তাদের জন্য সকলের সামনেই আপনি ভাল কাজ করেন| 20 সত্ লোকদের আঘাত করার জন্য মন্দ লোকরা একসঙ্গে জড় হয়| ঐসব মন্দ লোক লড়াই শুরু করতে চায়| কিন্তু আপনি সেই সব সত্ লোকদের লুকিয়ে রাখেন এবং তাদের রক্ষা করেন| আপনার নিজের আশ্রয়ে আপনি তাদের রক্ষা করেন| 21 প্রভু ধন্য! সারা শহর যখন শত্রুদের দ্বারা বেষ্টিত, তখন তিনি আমার প্রতি, তাঁর আশ্চর্য়্য় করুণা দেখিয়েছেন| 22 আমি ভীত হয়ে বলেছিলাম, “আমি এমন এক জায়গায় রয়েছি সেখানে ঈশ্বরও আমাকে দেখতে পাবেন না|” কিন্তু হে ঈশ্বর, আপনার সাহায্য চেয়ে আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম এবং আপনি আমার উচ্চস্বরের প্রার্থনা শুনেছিলেন| 23 হে ঈশ্বরের অনুগামীরা, তোমরা অবশ্যই প্রভুকে ভালোবেসো! যারা প্রভুর প্রতি নিষ্ঠাবান, প্রভু তাদের রক্ষা করেন| কিন্তু যারা নিজের ক্ষমতা নিয়ে দম্ভ করে প্রভু তাদের শাস্তি দেন| তারা তাদের প্রাপ্য শাস্তি পায়| 24 তোমরা যারা প্রভুর সাহায্যের জন্য প্রতীক্ষা করছো, তারা সাহসী হও, শক্তিশালী হও!
1 একজন ব্যক্তি, যার পাপসমূহ ক্ষমা করা হয়েছে, সে প্রকৃতই ধন্য| যার পাপ মুছে দেওয়া হয়েছে, সেই লোকও সত্যিই ধন্য| 2 একজন ব্যক্তি সত্যিকারের সুখী যখন প্রভু তাকে বলেন তার কোন দোষ নেই| সেই ব্যক্তি ভাগ্যবান, সে তার গোপন পাপ লুকিয়ে রাখে নি| 3 ঈশ্বর, আমি বার বার আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি, কিন্তু আমার গোপন পাপের কথা আমি বলিনি| তাই য়তবার আমি প্রার্থনা করেছি, ততবারই আমি দুর্বল হয়ে পড়েছি| 4 দিন রাত আপনি আমার জীবনকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলেছেন| গ্রীষ্মকালের শুকনো জমির মত আমি শুকিয়ে গিয়েছিলাম| 5 তখন আমি আমার সব পাপ প্রভুর কাছে স্বীকার করার সিদ্ধান্ত নিলাম| প্রভু, আমি আপনাকে আমার পাপের কথা বলেছি| আমার কোন অপরাধ আমি লুকিয়ে রাখিনি এবং আপনি আমার সব পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন! 6 এই কারণে, হে ঈশ্বর, সব অনুগামীদের আপনার প্রতি প্রার্থনা করা উচিত্| এমনকি, যখন প্লাবনের মত বিপর্য়যগুলি অন্যদের ওপর আসে, তখনও তারা আপনার অনুগামীদের কাছে আসবে না| 7 হে ঈশ্বর, আমার কাছে আপনিই লুকোনোর স্থান| আমার সমস্যা থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন| আপনি আমায় ঘিরে থাকেন এবং আমায় রক্ষা করেন| তাই আপনি য়ে ভাবে আমায় উদ্ধার করেছেন আমি তারই গান গাই| 8 প্রভু বলেন, “য়ে পথে তুমি বাঁচবে আমি তোমাকে সেই পথের শিক্ষা দেবো| আমি তোমায় সেই পথে পরিচালিত করবো| আমি তোমায় রক্ষা করবো এবং তোমার পথ প্রদর্শক হবো| 9 একটা ঘোড়া বা গাধা যাদের বোধশক্তি নেই, তাদের মত নির্বোধ হযো না| এই সব জন্তুকে বশে আনতে গেলে, লোকদের বল্গা ও লাগাম ব্যবহার করা উচিত| এই সব জিনিস ছাড়া ঐসব জন্তু আপনার কাছে আসবে না|” 10 মন্দ লোকদের কাছে অনেক যন্ত্রণা আসবে| কিন্তু যারা প্রভুতে আস্থা রাখে, তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা তাদের ঘিরে থাকবে| 11 ভালো লোকেরা, তোমরা আনন্দ কর এবং প্রভুতে আনন্দলাভ কর! তোমরা সত্ লোকেরা আনন্দ কর!
1 হে ভালো লোকরা, তোমরা প্রভুতে আনন্দ কর! ভাল লোকদের পক্ষে তাঁর প্রশংসা করাই ভালো! 2 বীণা বাজাও এবং প্রভুর প্রশংসা কর! দশতারা বাদ্যযন্ত্র সহযোগে প্রভুর গান গাও| 3 তাঁর জন্য একটা নতুন গান গাও| অত্যন্ত সুন্দরভাবে বাজাও এবং আনন্দ ধ্বনি দাও! 4 প্রভুর বাক্য সত্য| তিনি যা কিছু করেন, তাতে তোমরা নির্ভর করতে পারো| 5 ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ হতে ও ভাল কাজ করতে ভালবাসেন| প্রভুর প্রকৃত ভালোবাসা পৃথিবীকে ভরিয়ে দেয়! 6 প্রভু নির্দেশবাক্য উচ্চারণ করেছিলেন এবং এই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল| ঈশ্বরের মুখের নিঃশ্বাস থেকেই পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে| 7 ঈশ্বর, সমুদ্রের জল এক জায়গায় জমা করেছেন| তিনি সমুদ্রকে তার জায়গায় রাখেন| 8 সমগ্র পৃথিবীর সকলের উচিত্ ঈশ্বরকে ভয় এবং শ্রদ্ধা করা| জগতের প্রত্যেকটি মানুষের তাঁকে ভয় করা উচিত| 9 কেন? কারণ ঈশ্বর একটি আজ্ঞা দেন এবং সেটি ঘটে| যদি তিনি বলেন “থাম” তাহলেই সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়| 10 প্রভু প্রত্যেকের উপদেশকেই অর্থহীন করে তুলতে পারেন| তিনি জাতিদের পরিকল্পনাগুলি মূল্যহীন করে দিতে পারেন| 11 কিন্তু প্রভুর উপদেশ চিরন্তন সত্য| তাঁর পরিকল্পনাগুলো বংশপরম্পরায সত্য থাকে| 12 যারা প্রভুকে তাদের ঈশ্বররূপে পেয়েছে তারা সত্যিই ধন্য| কেন? কারণ ঈশ্বরই তাদের তাঁর নিজের লোক হিসেবে মনোনীত করেছেন| 13 প্রভু স্বর্গ থেকে নীচের দিকে তাকিযেছিলেন এবং সমস্ত লোকদের দেখেছেন| 14 পৃথিবীতে যারা বসবাস করছে, তাঁর উচ্চ সিংহাসন থেকে তিনি সকলকে দেখেন| 15 ঈশ্বর প্রত্যেকটি লোকের মন সৃষ্টি করেছেন| প্রত্যেকটি লোক কি ভাবছে ঈশ্বর তাও জানেন| 16 একজন রাজা তাঁর বৃহত্ শক্তিতে উদ্ধার পায় না| একজন বলবান সৈনিক, তাঁর নিজের শক্তিতে রক্ষা পায় না| 17 ঘোড়াগুলো যুদ্ধের বিজয় এনে দেয় না| এমনকি তাদের শক্তিও সৈন্যদের পালাতে সাহায্য করতে পারে না| 18 তাঁর প্রকৃত ভালবাসায আস্থা রেখে, যারা প্রভুকে অনুসরণ করে, প্রভু তাদের ওপর লক্ষ্য রাখেন এবং তাদের প্রতি যত্ন নেন| 19 সেই সব লোককে ঈশ্বর মৃত্যু থেকে রক্ষা করেন| ক্ষুধার্ত অবস্থায় তিনি তাদের শক্তি দেন| 20 তাই আমরা প্রভুর জন্য প্রতীক্ষা করবো| তিনি আমাদের সাহায্য করেন, রক্ষা করেন| 21 ঈশ্বর আমাদের সুখী করেন, আমরা তাঁর পবিত্র নামে প্রকৃতই আস্থা রাখি| 22 প্রভু, প্রকৃতই আমরা আপনার উপাসনা করি! তাই আমাদের প্রতি আপনার মহান ভালোবাসা দেখান|
1 সর্বদা আমি প্রভুকে ধন্যবাদ জানাই| আমার মুখ সর্বদাই তাঁর প্রশংসা করে| 2 হে বিনীত লোকরা, যখন আমি প্রভুর সম্পর্কে বড়াই করি তোমরা শোন এবং সুখী হও| 3 আমার সঙ্গে সঙ্গে ঈশ্বরের প্রশংসা কর| এসো আমরা তাঁর নামের সম্মান করি| 4 আমি ঈশ্বরের কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিলাম এবং তিনি শুনেছেন| যা কিছু আমি ভয় করতাম, তা থেকে তিনি আমায় উদ্ধার করেছেন| 5 সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের দিকে চাও, তিনি তোমায় গ্রহণ করবেন| লজ্জিত হযো না| 6 এই দরিদ্র মানুষটি প্রভুকে ডেকে সাহায্য প্রার্থনা করে| প্রভু আমার কথা শুনেছেন এবং সব সমস্যা থেকে তিনি আমায় রক্ষা করেছেন| 7 যারা প্রভুকে অনুসরণ করে, প্রভুর দূত এসে তাদের চারিদিকে শিবির স্থাপন করেন| প্রভুর দূত তাদের রক্ষা করেন| 8 প্রভু কতখানি ভালো তা দেখাবার জন্য প্রভুর স্বাদ গ্রহণ কর| য়ে প্রভুর ওপর নির্ভর করে সে সত্যিই সুখী হয়| 9 তোমরা প্রভুর পবিত্র অনুগামীরা, প্রভুকে শ্রদ্ধা কর| কারণ অনুগামীদের কাছে প্রত্যেকটি জিনিস আছে যা তাদের প্রযোজন| 10 বলবান লোকরাও ক্ষুধার্ত এবং দুর্বল হয়ে পড়বে| কিন্তু যারা ঈশ্বরের কাছে সাহায্যের জন্য যাবে, তারা সব ভালো জিনিসই পাবে| 11 শিশুরা, আমার কথা শোন, আমি তোমাদের শিখিয়ে দেবো কেমন করে প্রভুকে শ্রদ্ধা করতে হয়| 12 যদি কেউ জীবনকে ভালোবাসে এবং দীর্ঘ ও ভালো জীবনযাপন করতে চায়, 13 তাহলে, সেই ব্যক্তি য়েন মন্দ কথা না বলে, সে য়েন মিথ্যা কথা না বলে| 14 খারাপ কাজ করা বন্ধ করে দাও! ভালো কাজ কর| শান্তির জন্য কাজ কর| য়তক্ষণ না শান্তি পাও, ততক্ষণ তার পেছনে ছুটে বেড়াও| 15 ভালো লোকদের প্রভু রক্ষা করেন| তিনি তাদের প্রার্থনা শোনেন| 16 কিন্তু যারা খারাপ কাজ করে প্রভু তাদের বিরোধী| তিনি তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেন! 17 প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর এবং তিনি তোমার কথা শুনবেন এবং সব সংকট থেকে তিনি তোমায় উদ্ধার করবেন| 18 যখন সংকট আসে তখন কযেকজন দম্ভ করা থেকে বিরত হয়| প্রভু সেই সব ভগ্ন হৃদয় লোকের কাছাকাছি থাকেন এবং তাদের উদ্ধার করেন| 19 ভালো লোকদের অনেক সমস্যা হতে পারে, কিন্তু প্রত্যেকটা সমস্যা থেকে প্রভু তাদের উদ্ধার করবেন| 20 তাদের প্রত্যেকটি হাড় প্রভু রক্ষা করবেন| তাদের একটি হাড়ও ভাঙবে না| 21 দুষ্ট লোকদের শযতানি তাদের ক্রমশঃ ধ্বংস করবে| 22 প্রভু তাঁর দাসদের আত্মাকে রক্ষা করেন| যারা তাঁর ওপর নির্ভর করে তিনি তাদের বিনষ্ট হতে দেবেন না|
1 হে প্রভু, আমার বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে য়ুদ্ধ করুন! যারা আমার সঙ্গে য়ুদ্ধ করেছে তাদের সঙ্গে আপনি য়ুদ্ধ করুন! 2 প্রভু, ঢাল এবং বর্ম তুলে নিন| উঠুন এবং আমায় সাহায্য করুন| 3 বর্শা এবং বল্লম হাতে তুলে নিন এবং যারা আমার বিরুদ্ধে রয়েছে তাদের সঙ্গে য়ুদ্ধ কর| হে প্রভু আমার আত্মাকে বলুন, “আমি তোমায় উদ্ধার করবো|” 4 লোক আমাকে হত্যা করতে চাইছে| ওদের পরাজিত এবং লজ্জিত করুন| এমন করুন য়েন ওরা পিছন ফিরে পালিয়ে যায়| ওরা আমায় আঘাত করার চক্রান্ত করছে| ওদের পরাজিত ও নাস্তানাবুদ করে ছাড়ুন| 5 ওদের তুষের মত বাতাসে উড়িযে দিন| প্রভুর দূত য়েন ওদের ধাওযা করে| 6 প্রভু ওদের পথ অন্ধকারময় এবং পিচ্ছিল করে দিন| প্রভুর দূত য়েন ওদের তাড়া করে| 7 আমি ওদের কাছে কোন ভুল কাজ করিনি কিন্তু ঐসব লোক আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছে| সম্পূর্ণ বিনা কারণে ওরা আমায় ফাঁদে ফেলতে চাইছে| 8 তাই প্রভু, ওদের নিজেদের ফাঁদেই ওদের ফেলুন| নিজেদের জালেই ওরা হোঁচট খাক্| কোন অজানা বিপদ য়েন ওদের উপরে বর্তায| 9 তখন আমি প্রভুতে আনন্দ করবো| তিনি যখন আমায় উদ্ধার করবেন তখন আমি সুখী হবো| 10 আমার সমস্ত সত্ত্বা দিয়ে আমি বলব, “প্রভু আপনার মত কেউই নেই| শক্তিশালী লোকেদের হাত থেকে আপনি একজন দুর্বল লোককে বাঁচিয়েছেন| আপনি একজন দরিদ্র লোককে উদ্ধার করেন যার কাছ থেকে লোকে চুরি করতে চেষ্টা করে|” 11 একদল মিথ্যা সাক্ষী আমায় আঘাত করবার জন্য পরিকল্পনা করছে| ওরা আমায় নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে| আমি কিন্তু জানি না ওরা কি বিষযে বলছে| 12 আমি কেবলমাত্র ভাল কাজই করেছি| কিন্তু ওরা আমার প্রতি খারাপ কাজই করবে| প্রভু, য়ে রকম ভালো জিনিস আমার প্রাপ্য তা আমায় দিন| 13 যখন ওরা অসুস্থ হয়েছিলো, আমি ওদের জন্য দুঃখ পেয়েছিলাম| উপবাসের মাধ্যমে আমি সেই দুঃখ প্রকাশ করেছি| ওদের জন্য প্রার্থনা করে এটাই কি আমার প্রাপ্য? 14 ঐসব লোকদের জন্য আমি দুঃখের পোশাক পরেছিলাম| ওদের আমি আমার বন্ধুর মত, এমন কি ভাইযের মত দেখেছিলাম| মাযের মৃত্যুর পর য়ে লোকটা কাঁদে আমি তার মতই দুঃখিত ছিলাম| ওদের দুঃখের কারণে আমি কালো কাপড় পরেছিলাম| দুঃখে মাথা নত করে আমি হাঁটাচলা করতাম| 15 কিন্তু যখন আমি একটু ভুল করলাম, ওরা আমায় উপহাস করলো| ওরা আসলে প্রকৃত বন্ধু ছিল না| আমি ওদের চিনতামও না| কিন্তু চারিদিক থেকে ওরা আমায় ঘিরেছিল এবং আক্রমণ করেছিল| 16 অত্যন্ত খারাপ ভাষায় ওরা আমায় বিদ্রূপ করেছে| ওরা আমার বিরুদ্ধে ক্রোধ দেখিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে| 17 হে আমার প্রভু, আর কতদিন আপনি এইসব খারাপ ঘটনা ঘটতে শুধুই দেখে যাবেন? ওরা আমায় ধ্বংস করতে চাইছে| হে প্রভু, আমার জীবন রক্ষা করুন| আমার প্রিয জীবনকে ওদের থেকে রক্ষা করুন| ওরা সিংহের মত হিংস্র| 18 প্রভু মন্দিরের মহাসমাজে আমি আপনার প্রশংসা করবো| সেই বলবান জনতার সামনে আমি আপনার প্রশংসা করবো| 19 ঐসব শত্রুকে কোন কারণেই আমাকে ঘৃণা করতে অথবা পরাজিত করতে দেবেন না| আমাকে ওদের বিদ্রূপের পাত্র হতে দেবেন না| ওদের গোপন পরিকল্পনার জন্য ওরা অবশ্যই শাস্তি পাবে| 20 আমার শত্রুরা প্রকৃতপক্ষে শান্তির জন্য পরিকল্পনা করছে না| ওরা দেশের শান্তিপ্রিয লোকদের বিরুদ্ধে অনিষ্টকর কাজ করার জন্য গোপনে পরিকল্পনা করছে| 21 শত্রুরা আমার সম্পর্কে বাজে কথা বলে চলেছে| ওরা মিথ্যা কথা বলে, ওরা বলে “হ্যাঁ হ্যাঁ জানি, তুমি কি করছো|” 22 হে প্রভু আপনি অবশ্যই দেখতে পাচ্ছেন প্রকৃতপক্ষে কি ঘটছে| তাই, চুপ করে থাকবেন না| আমায় ছেড়ে যাবেন না| 23 প্রভু, উঠুন! জাগুন! হে আমার প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার জন্য লড়াই করুন, আমাকে ন্যায় বিচার দিন| 24 প্রভু, আমার ঈশ্বর, আপনার নিরপেক্ষতা দিয়ে আমার বিচার করুন| ঐ লোকগুলোকে আমার প্রতি বিদ্রূপ করতে দেবেন না| 25 ওরা য়েন বলতে না পারে, “হ্যাঁ! এইতো আমরা যা চেয়েছি, তাই পেয়েছি!” ওরা য়েন বলতে না পারে, “আমরা ওকে ধ্বংস করেছি!” 26 আমি আশা করি, আমার সব শত্রু লজ্জিত ও অপমানিত হবে| যখন আমার কিছু খারাপ হয়েছিল, তখন ওরা খুব খুশী হয়েছিল| ওরা ভেবেছিলো ওরা আমার থেকে বেশী ভালো! তাই, ওই সব লোক য়েন লজ্জা ও অবমাননায ঢেকে যায়| 27 কিছু লোক চায় আমার ভালো হোক্| আমি আশা করি, ওরা প্রচণ্ড সুখী হবে! ওরা সব সময় বলে, “প্রভু মহান! যা তাঁর দাসের পক্ষে মঙ্গলকর, তিনি তাই চান|” 28 তাই হে প্রভু, আমি লোকদের বলি, আপনি কত ভাল| প্রতিদিনই আমি আপনার প্রশংসা করি|
1 একজন খারাপ লোক নিজের উপরেই খুব খারাপ আচরণ করে, যখন সে বলে, “আমি ঈশ্বরকে ভয় বা শ্রদ্ধা করবো না|” 2 সেই লোক নিজের প্রতিই মিথ্যাচার করে| সেই লোক তার নিজের দোষ দেখে না| তাই সে ক্ষমাও চায় না| 3 তার কথামাত্রই অকাজের মিথ্যা কথা| ঐ লোকের কোনদিন সত্য জ্ঞান হবে না এবং কোনদিন সে ভাল কাজ করতে শিখবে না| 4 রাতের বেলায় সে অকাজের পরিকল্পনা করে সকালে উঠে সে কোনও ভাল কাজই করে না| এমনকি সে মন্দ করাকেও এড়িয়ে চলে না| 5 হে প্রভু, আপনার প্রকৃত প্রেম আকাশ ছুঁযে যায়, আর আপনার আনুগত্য স্বর্গে পৌঁছায| 6 হে প্রভু আপনার ধার্মিকতা উচ্চতম পর্বতের চেয়েও উঁচু| আপনার ন্যায়নীতি গভীরতম সমুদ্রের চেয়েও গভীর| প্রভু, আপনিই মানুষ এবং পশুদের রক্ষা করেন| 7 আপনার বিশ্বস্ত প্রেমের চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই নেই| লোকরা এবং দূতরা আপনার পাখার ছায়ায় আশ্রয় নেয| 8 হে প্রভু, আপনার মন্দিরের ভাল জিনিস থেকে তারা নতুন শক্তি পায়| আপনার আনন্দ -নদী থেকে আপনি ওদের জল পান করতে দেন| 9 প্রভু আপনার থেকেই জীবনের ঝর্ণা ধারা প্রবাহিত হয়! আপনার আলো আমাদের আলো দেখতে সাহায্য করে| 10 প্রভু, যারা সত্যি সত্যিই আপনাকে চেনে, তাদের প্রতি আপনার ভালোবাসা অব্যাহত রাখুন| যারা আপনার প্রতি নিষ্ঠাবান আপনি তাদের মঙ্গল করুন| 11 প্রভু অহঙ্কারী লোকদের হাতে আমাকে ধরা পড়তে দেবেন না| দুষ্ট লোকদের আমাকে ধরতে দেবেন না| 12 ওদের কবরের ফলকে লিখে দিন, “এখানে দুষ্ট লোকদের দেহ পড়ে রয়েছে| ওদের ধ্বংস করা হয়েছে| আর কোনদিন ওরা জাগবে না|”
1 দুষ্ট লোকদের দেখে মর্মপীড়া বোধ করো না| যারা মন্দ কাজ করে, ওদের দেখে ঈর্ষান্বিত হযো না| 2 মন্দ লোকরা সবুজ ঘাস-পাতার মত, যা তাড়াতাড়ি বিবর্ণ হয়ে মারা যায়| 3 যদি তুমি প্রভুতে আস্থা রাখ এবং ভালো কাজ কর, তাহলে তুমি বেঁচে থাকবে এবং এই পৃথিবীর ভাল বস্তুগুলি উপভোগ করবে| 4 প্রভুর সেবা করে নিজে উপভোগ কর এবং তাহলে তোমার যা প্রযোজন, তিনি তোমায় তাই দেবেন| 5 প্রভুর ওপরে নির্ভর কর| তাঁকে বিশ্বাস কর, যা করার তিনি তাই করবেন| 6 প্রভু তোমার ধার্ম্মিকতা ও ন্যায়নীতি মধ্যাহ্নের সূর্য়্য়ের মত উজ্জ্বল করুন| 7 প্রভুকে বিশ্বাস কর এবং তাঁর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা কর| মন্দ লোকরা যখন জয়ী হয় তখন হতাশ হযো না| দুষ্ট লোকেরা যখন কু-পরিকল্পনা করে জয়ী হয়, তখন মর্মপীড়া বোধ করো না| 8 ক্রুদ্ধ হযো না! রাগে আত্মহারা হয়ে য়েও না! এতখানি হতাশ হয়ে য়েও না, যাতে তোমারও খারাপ কাজ করতে ইচ্ছা হয়| 9 কেন? কারণ মন্দ লোকরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| কিন্তু যারা সাহায্যের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবে, তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি পাবে| 10 খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দুষ্ট লোকরা আর সেখানে থাকবে না| তোমরা হয়তো তাদের খুঁজবে, কিন্তু ততদিনে তারা সবাই গত হয়েছে! 11 বিনযী লোকরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি পাবে এবং তারা শান্তি ভোগ করবে| 12 মন্দ লোকরা ভালো লোকদের বিরুদ্ধে মন্দ ফন্দি আঁটবে| ভালো লোকদের দিকে দাঁত কিড়মিড় করে ওরা ওদের ক্রোধ প্রকাশ করবে| 13 কিন্তু আমাদের প্রভু ওদের দেখে দেখে হাসেন| ওদের য়ে কি হবে, তা তিনি দেখতে পান| 14 মন্দ লোকরা তাদের তরবারি তুলে নেয, ওদের তীর তাক করে| ওরা দরিদ্র সহায়সম্বলহীন লোককে হত্যা করতে চায়| সত্ এবং ভালো লোকদের ওরা হত্যা করতে চায়. 15 কিন্তু ওদের তরবারি ওদের বুকেই বিদ্ধ হবে, ওদের তীরও ভেঙ্গে যাবে| 16 মন্দ লোকদের বিপুল সমাবেশের চেয়ে মুষ্টিমেয কিছু সত্ লোক অনেক ভালো| 17 কেন? কারণ মন্দ লোকরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| কিন্তু প্রভু সত্ লোকদের প্রতি যত্ন নেন| 18 খাঁটি ভালো মানুষদের প্রভু আজীবন রক্ষা করেন| ওরা অনন্তকাল ধরে পুরস্কার পাবে| 19 সংকট এলে সত্ লোকরা হতাশ হবে না| দুর্ভিক্ষের সময় ভালো লোকদের জন্য প্রচুর আহার থাকবে| 20 কিন্তু মন্দ লোকরা প্রভুর শত্রু এবং ওরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| ওদের উপত্যকা শুকিয়ে যাবে এবং পুড়ে যাবে| ওরা সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হবে| 21 একজন দুষ্ট লোক খুব তাড়াতাড়ি টাকা ধার করে, কিন্তু কখনও সেটা ফেরত্ দেয় না| কিন্তু ভালো লোক মুক্ত হাতে অপরকে দেয়| 22 একজন ভালো লোক যদি লোকদের আশীর্বাদ করে, তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত দেশ পাবে| যদি সে অন্য়ের খারাপ চায়, তাহলে তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| 23 য়ে সৈন্য সাবধানে চলে, প্রভু তাকে সাহায্য করেন| প্রভু তাকে পড়ে য়েতে দেন না| 24 যদি সেই সৈন্য দৌড়ে গিয়ে শত্রুকে আক্রমণ করে, প্রভু সেই সৈন্য়ের হাত ধরে তাকে পতন থেকে রক্ষা করেন| 25 একসময় আমি তরুণ ছিলাম, এখন আমি বৃদ্ধ হয়েছি| আমি কখনও ঈশ্বরকে ভালো লোকেদের পরিত্যাগ করতে দেখি নি| ভালো মানুষের সন্তানদের আমি কখনও খাবার ভিক্ষা করতে দেখি নি| 26 একজন সত্ লোক মুক্ত হাতে অন্যকে দেয়| সত্ লোকদের সন্তানরা আশীর্বাদের মত| 27 যদি তুমি খারাপ কাজ না কর, যদি তুমি ভালো কাজ কর, তুমি অনন্তকাল বেঁচে থাকবে| 28 প্রভু ন্যায় ভালবাসেন| সাহায্য না করে তিনি তাঁর অনুগামীদের পরিত্যাগ করেন না| প্রভু তাঁর অনুগামীদের সর্বদাই রক্ষা করেন| কিন্তু দুষ্ট লোকদের তিনি বিনাশ করেন| 29 সত্ লোকরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত রাজ্য পাবে| সেখানে তারা চিরদিন বাস করবে| 30 একজন সত্ লোক সর্বদাই সুপরামর্শ দেয়| সে প্রত্যেকের জন্যই ন্যায্য সিদ্ধান্ত দেয়| 31 তার মনের মধ্যে সর্বদাই প্রভুর শিক্ষামালা থাকে| তাই সে সত্ পথে বাঁচা থেকে বিরত হবে না| 32 কিন্তু দুষ্ট লোকরা সব সময় সত্ লোকদের হত্যা করবার সুযোগ খোঁজে| 33 সত্ লোকরা যখন মন্দ লোকদের ফাঁদে পড়ে, তখন প্রভু সত্ লোকদের ত্যাগ করেন না| ঈশ্বর কখনই সত্ লোকদের দোষী বলে বিচারে সাব্যস্ত হতে দেবেন না| 34 ঈশ্বর যা বলেন তা কর এবং তাঁর সাহায্যের প্রতীক্ষা কর| যখন তিনি মন্দ লোকদের জোর করে তাড়িয়ে দেবেন, তখন প্রভু তোমাকেই জয়ী করবেন এবং তুমিই প্রভুর প্রতিশ্রুত রাজ্য পাবে| 35 আমি একজন দুষ্ট লোককে দেখেছিলাম য়ে ছিল ক্ষমতাশালী| তার ছিল একটা স্বাস্থ্যবান সবুজ গাছের মতো একটি শক্তিশালী দেহ| 36 পরে আমি সেই পথে গিয়েছি| আমি তাকে খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি| 37 সত্ এবং পবিত্র হও| শান্তিপ্রিয লোকরা অনেক উত্তরপুরুষ পাবে| 38 কিন্তু যারা ঈশ্বরের বিধান ভাঙ্গে তারা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হবে| এবং তাদের উত্তরপুরুষদেরও দেশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে| 39 প্রভু সত্ লোকেদের রক্ষা করেন| সত্ লোকেরা যখন সংকটে পড়ে, তখন প্রভুই তাদের আশ্রয়| 40 প্রভু সত্ লোকদের সাহায্য করেন, রক্ষা করেন| সত্ লোকরা প্রভুতে বিশ্বাস রাখে এবং তিনি তাদের দুষ্ট লোকদের হাত থেকে রক্ষা করেন|
1 প্রভু, ক্রুদ্ধ অবস্থায় আমার সমালোচনা করবেন না| রাগান্বিত অবস্থায় আমায় শাস্তি দেবেন না| 2 প্রভু আপনি আমায় আঘাত করেছেন| আপনার তীর আমার হৃদয়ের গভীরে বিদ্ধ হয়েছে| 3 আপনি আমায় শাস্তি দিয়েছেন| এখন আমার সারা শরীর যন্ত্রণা করছে| আমি পাপ করেছিলাম, আপনি আমায় শাস্তি দিলেন| আমার সমস্ত হাড় ব্যথা করছে| 4 মন্দ কাজ করার দাযে আমি অপরাধী| আমার সেই পাপের এত ভার য়ে আমি লজ্জায আমার মাথা তুলতে পারছি না| 5 আমি মূর্খের মত কাজ করেছি| এখন আমার আছে দুর্গন্ধময় ক্ষতস্থান| 6 এখন আমি সর্বদা বেদনায় বেঁকে রয়েছি| সারাদিনই আমি মানসিক অবসাদে কাটাই| 7 আমার সারা শরীর জ্বরে টন্-টন্ করছে| 8 আমি এমনই যন্ত্রণায় কাতর য়ে আমি কিছু অনুভব করতে পারছি না| আমার দ্রুত স্পন্দিত হৃদয় আমার আর্তনাদের কারণ! 9 হে প্রভু, আপনি আমার তীব্র আর্তনাদ শুনেছেন| আমি কোন্ কোন্ জিনিসের আকাঙ্খী তা আপনি জানেন| 10 আমার অন্তরে তীব্র ঘা দিচ্ছে| আমার সব শক্তি চলে গেছে এবং আমি অন্ধ হতে বসেছি| 11 আমার অসুস্থতার জন্য আমার বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের কেউই আমায় দেখতে আসে না| আমার পরিবারের কেউ আমার কাছে আসবে না| 12 শত্রুরা যারা আমায় হত্যা করতে চায় তারা আমার নামে মিথ্যা রটনা করে| ওরা যারা আমায় হত্যা করতে চায়, আমার নামে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে| সর্বদাই ওরা আমার বিষযে আলোচনা করছে| 13 কিন্তু য়ে কানে শোনে না আমি তার মতই বধির| য়ে কথা বলতে পারে না, আমি তার মতই মূক হয়ে আছি| 14 আমি সেই লোকের মত য়ে, লোকে তার সম্পর্কে কি বলছে, তা শুনতে পায় না| আমি যুক্তিতর্কে প্রমাণ করতে অক্ষম য়ে আমার শত্রুরা মিথ্যা বলছে| 15 তাই প্রভু, আপনি আমায় বাঁচান| হে প্রভু, আমার ঈশ্বর, আপনি আমার হয়ে কথা বলুন| 16 আমি যদি কিছু বলি, তবে আমার শত্রুরা আমায় নিয়ে মজা করবে| আমাকে অসুস্থ দেখলে তারা ভাববে কোন অন্যায় কাজের জন্য আমার শাস্তি হয়েছে| 17 আমি জানি খারাপ করার জন্য আমি দোষী| আমার যন্ত্রণা আমি ভুলতে পারছি না| 18 প্রভু, য়ে খারাপ কাজ আমি করেছি, তা আমি আপনাকে বলেছি| আমার পাপের জন্য আমি দুঃখিত| 19 আমার শত্রুরা স্বাস্থ্য়বান ও বলবান| ওরা অনেক অনেক মিথ্যা কথা বলেছে| 20 আমার শত্রুরা আমার প্রতি অনেক খারাপ আচরণ করেছে| আমি কিন্তু ওদের শুধু ভালো করেছি| আমি শুধুমাত্র ভাল কাজই করতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু ওই সব লোক আমার বিরুদ্ধে গেছে| 21 প্রভু আমায় ছেড়ে যাবেন না! হে আমার ঈশ্বর, আমার কাছে থাকুন! 22 শীঘ্র এসে আমায় সাহায্য করুন! হে ঈশ্বর, আপনি আমায় রক্ষা করুন!
1 আমি বলেছিলাম, “আমি যা বলবো সে সম্পর্কে সতর্ক থাকবো| আমার জিভকে আমাকে কোন পাপ করতে দেবো না| যখন আমি দুষ্ট লোকদের মধ্যে থাকবো তখন আমি চুপ করে থাকবো|” 2 তাই আমি কিছু বলি নি| এমন কি আমি কোন ভালো কথাও বলি নি! কিন্তু আমি আরো বেশী যন্ত্রণা বোধ করছি| 3 আমি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ ছিলাম| এ বিষযে আমি য়ত ভেবেছি, ততই ক্রুদ্ধ হয়েছি| তাই আমি কিছু বলি নি| 4 হে প্রভু, আমায় বলে দিন, এখন আমার কী হবে? বলুন, আর কতদিন আমি বাঁচবো? আমাকে জানতে দিন আসলে আমার জীবন কত ছোট| 5 হে প্রভু আপনি আমায় একটি স্বল্প আযু দান করেছেন| আপনার তুলনায় আমার জীবন কিছুই নয়| প্রত্যেকটি মানুষের জীবন মেঘের মতই যা তাড়াতাড়ি মিলিযে যায়| কোন মানুষই চিরদিন বাঁচবে না| 6 আমাদের জীবন দর্পণের প্রতিবিম্বের মত, আমাদের সমস্যারও প্রকৃত কোন মূল্য নেই| আমাদের মৃত্যুর পর কারা এই সব ভোগ করবে তা না জেনেই আমরা সারা জীবন ধরে জিনিসপত্র সংগ্রহ করে চলেছি| 7 তাই প্রভু, আমি আর কী আশা রাখবো? আপনিই আমার আশা! 8 প্রভু আমি য়ে সব মন্দ কাজ করেছি, তা থেকে আমাকে বাঁচান| আমাকে য়েন একজন দুষ্ট মূর্খের লজ্জ্বার সম্মুখীন হতে না হয়| 9 আমি আমার মুখ খুলবো না| আমি কোন কিছুই বলবো না| প্রভু যা করণীয, আপনি তাই করেছেন| 10 কিন্তু হে ঈশ্বর, আমাকে আর শাস্তি দেবেন না| আপনি যদি না থামেন আপনার হাতে আমি শেষ হয়ে যাবো! 11 হে প্রভু, বাঁচার প্রকৃত পথ সম্পর্কে শিক্ষা দেবার জন্য, যারা ভুল কাজ করে, তাদের আপনি শাস্তি দেন| মথ য়েমন কাপড় কেটে নষ্ট করে, তেমন করে মানুষ যা ভালোবাসে, তা আপনি বিনষ্ট করে দেন| হ্যাঁ, আমাদের জীবন ক্ষুদ্র মেঘের মত, যা তাড়াতাড়ি মিলিযে যায়| 12 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন! চিত্কার করে আমি য়ে প্রার্থনা করি তা শুনুন| আমার চোখের জলের দিকে তাকান| আমি একজন পথিক মাত্র য়ে এই জীবন আপনার সঙ্গে ভোগ করছি| আমার পূর্বপুরুষদের মত আমি ক্ষণিকের জন্য এখানে থাকবো| 13 মৃত্যুর পূর্বে, আমার চলে যাওয়ার আগে, আমাকে একা থাকতে দিন, আমাকে সুখী হতে দিন|
1 আমি প্রভুকে ডেকেছিলাম, তিনি তা শুনেছেন| তিনি আমার ডাক শুনেছেন| 2 তিনি আমাকে কবর থেকে টেনে তুলেছেন| তিনি আমাকে সেই কাদাময় জায়গা থেকে টেনে তুলেছেন| তিনি আমায় উদ্ধার করে, আমাকে শক্ত মাটিতে দাঁড় করিয়েছেন| তিনি আমার পদস্খলন হতে দেন নি| 3 প্রভু আমার মুখে নতুন গান দিয়েছেন, সেই গান দিয়ে আমি আমার ঈশ্বরের প্রশংসা করি| বহুলোক দেখতে পাবে আমার কি হবে এবং তারা ঈশ্বরের উপাসনা করবে| তাঁরা প্রভুকে বিশ্বাস করবে| 4 সেই ধন্য য়ে প্রভুর উপর বিশ্বাস রাখে| যদি কেউ অপদেবতা এবং মূর্ত্তির দিকে সাহায্যের জন্য না যায় সে প্রকৃতই সুখী হবে| 5 প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, আপনি অনেক আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেছেন! আমাদের জন্য আপনার ভীষণ ভালো পরিকল্পনা আছে| কোন লোকই তার সব তালিকা করতে পারবে না! আমি সেই সব জিনিসের কথা বার বার বলবো যা গুনে শেষ করা যায় না| 6 আপনি আমাকে প্রকৃত সত্য বাণী শোনাবার কান দিয়েছেন| হে প্রভু আপনি আমাকে এটা বুঝতে দিয়েছেন| আপনি প্রকৃতপক্ষে উত্সর্গ বা শস্য় নৈবেদ্য কোনটাই চান নি| আপনি আসলে হোমবলি এবং পাপমোচনের নৈবেদ্যও চান না| কিন্তু আপনি যা চান তা হল অন্য আরো কিছু| 7 তাই আমি বলেছি,. “এই য়ে আমি, আমায় গ্রহণ করুন| আমি এসেছি| আমার সম্পর্কে বইতে এমনই লেখা আছে| 8 হে ঈশ্বর, আপনি যা চান, আমি সেইগুলোই করতে চাই| আমি আপনার শিক্ষামালাগুলো জানতে চাই| 9 মহাসভায মানুষের সামনে আমি জয়ের কথা বলেছি| এবং প্রভু আপনি জানেন, সুসমাচার উচ্চারণ করা থেকে আমি কখনও বিরত হব না| 10 আপনার কৃত মহত্ কীর্তি সম্পর্কে আমি বলেছি| আমার অন্তরেও আমি সে সব কথা গোপন রাখি নি| প্রভু আমি লোকদের বলেছি, নিজেদের বাঁচানোর জন্য তারা আপনার ওপর নির্ভর করতে পারে| আমি মহাসভায আপনার করুণা ও বিশ্বস্ততা গোপন করি নি| 11 তাই, প্রভু আপনার করুণা আমার কাছে লুকোবেন না! আপনার করুণা ও বিশ্বস্ততা দিয়ে আমায় রক্ষা করুন|” 12 মন্দ লোকরা আমার চারদিকে জড় হয়েছে| তাদের গুনে শেষ করা যাবে না! আমি আমার পাপের আবর্ত্তে আটকে পড়েছি| আমি তা থেকে পালাতে পারছি না| আমার মাথার চুলের চেয়েও ওদের সংখ্য়া বেশী| আমি সাহস হারিযেছি| 13 প্রভু আমার কাছে ছুটে আসুন, আমায় বাঁচান! প্রভু তাড়াতাড়ি এসে আমায় সাহায্য করুন! 14 ঐসব মন্দ লোক আমায় হত্যা করতে চাইছে| প্রভু ঐসব লোককে হতাশ ও লজ্জিত করুন| ঐ লোকরা আমায় আঘাত করতে চাইছে| ওরা য়েন লজ্জায ছুটে পালিয়ে যায়! 15 ঐ মন্দ লোকরা আমায় নিয়ে হাসাহাসি করে| ঐসব লোক য়েন অবমাননায বোবা হয়ে যায়! 16 কিন্তু তারা, যারা আপনার কাছে আসে য়েন সুখী হয় ও আনন্দ পায়| তারা আপনার হাতে উদ্ধার পেতে ভালবাসে| অতএব তারা বলুক, “প্রভুর প্রশংসা কর!”পরিচালকের প্রতি| দায়ূদের একটি গীত| 17 প্রভু, আমি একজন দরিদ্র ও অসহায় মানুষ| আমায় সাহায্য করুন, আমায় রক্ষা করুন| হে আমার ঈশ্বর, আর দেরী করবেন না!
1 সেই ব্যক্তি য়ে দীন দরিদ্রকে সফল হতে সাহায্য করে, সে বিপুল পরিমানে আশীর্বাদ পাবে| সমস্যার সময় প্রভু তাকে উদ্ধার করবেন| 2 প্রভু সেই ব্যক্তিকে রক্ষা করবেন এবং জীবিত রাখবেন| পৃথিবীতে সেই লোকই আশীর্বাদ ধন্য হবে| তার সেই লোকের শত্রুর হাতে ঈশ্বর তাকে ধ্বংস হতে দেবেন না| 3 যখন সেই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকে, প্রভু তাকে শক্তি দেন| সে বিছানায় অসুস্থ থাকতে পারে, কিন্তু প্রভু তাকে সুস্থ করে দেন! 4 আমি বলেছিলাম, “প্রভু, আমার প্রতি সদয় হোন, আমি আপনার বিরুদ্ধে পাপ করেছি, আপনি আমায় ক্ষমা করে দিন, সুস্থ করে তুলুন|” 5 আমার শত্রুরা আমার সম্পর্কে খারাপ কথা বলছে| তারা বলে, “যখন ও মারা যাবে তখন ওর নাম মুছে যাবে|” 6 লোকে আমাকে দেখতে আসে কিন্তু তারা প্রকৃতই কি ভাবছে, তা আমাকে বলে না| ওরা আমার সম্পর্কে খবর নিতে আসে এবং ফিরে গিয়ে গুজব ছড়ায| 7 আমার শত্রু আমার সম্পর্কে কানাঘুষো করে| ওরা আমার বিরুদ্ধে খারাপ কাজ করার ষড়যন্ত্র করছে| 8 ওরা বলে, “ও নিশ্চয় কোন অন্যায় কাজ করেছিলো| তাই ও অসুস্থ হয়েছে এবং আর কখনও ভালো হয়ে উঠবে না|” 9 আমার প্রিযতম বন্ধু, আমার সঙ্গে খেয়েছে| আমি ওকে বিশ্বাস করেছিলাম| কিন্তু এখন সেও আমার বিরুদ্ধে গিয়েছে| 10 তাই প্রভু আমার প্রতি সদয় হোন| আমাকে উঠে দাঁড়াতে দিন| ওদের প্রাপ্য আমি ফেরত্ দেবো| 11 প্রভু শত্রুদের হাতে আমাকে আহত হতে দেবেন না| তাহলে আমি বুঝবো আমাকে আঘাত করার জন্য আপনি ওদের পাঠান নি| 12 আমি নির্দোষ ছিলাম, তাই আপনি আমায় সহায়তা দিয়েছিলেন| আমাকে উঠে দাঁড়াতে দিন, চিরদিন আপনার সেবা করতে দিন| 13 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা কর! তিনি চিরদিন ছিলেন, তিনি চিরদিন বিরাজিত থাকবেন| আমেন|
1 হরিণ য়েমন ঝর্ণার জলের জন্য তৃষ্ণার্ত থাকে, সেইভাবে হে ঈশ্বর, আমার আত্মাও আপনার জন্য তৃষ্ণার্ত| 2 জীবন্ত ঈশ্বরের জন্য আমার আত্মা তৃষ্ণার্ত| আমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে পারি? 3 আমার শত্রু আমায় অনবরত উপহাস করে চলেছে| সে বলছে, “কোথায তোমার ঈশ্বর? তিনি কি এখনও তোমায় বাঁচাতে আসেন নি?” আমি এমনই দুঃখী য়ে একমাত্র চোখের জলই আমার খাদ্য হয়েছে| 4 পবিত্র মন্দিরে যখন আমার সুসময় ছিল, সে কথা যখন স্মরণ করি তখন আমার হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে যায়| আমার মনে পড়ে আমি ভীড়ের একেবারে সামনে গিয়ে জনতাকে ঈশ্বরের মন্দিরের দিকে নেতৃত্ব দিতে নিয়ে য়েতাম| উত্সব পালনের সময় প্রভুর প্রশংসায় জনতা য়ে আনন্দ গীত গাইতো আমি তা স্মরণ করি| 5 কেন আমি এত বিমর্ষ হব? কেন আমি এত মর্মপীড়া ভোগ করব? আমি ঈশ্বরের সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করবো| তবু আমি তাঁর প্রশংসা করবার একটা সুযোগ পাবো| তিনি আমায় রক্ষা করবেন! 6 হে আমার ঈশ্বর, আমি এত দুঃখিত কারণ, এই ছোট্ট পাহাড়, এই জায়গা থেকে আমি আপনাকে স্মরণ করছি| যেখানে হর্ম্মোণ পর্বত এ য়র্দন নদী এসে মিলেছে| 7 পৃথিবীর গভীর অতল থেকে আগত জল, জলপ্রপাতের মধ্যে দিয়ে ঝড়ে পড়ছে, আমি সেই জলের গর্জন শুনেছি| প্রভু আপনার সব তরঙ্গ বিক্ষোভ আমার মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে| আপনি আমায় সমস্যার মধ্যে ফেলেছেন! 8 প্রত্যেক দিন আমার প্রতি প্রভু তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা দেখান| প্রতি রাতে আমার জীবন্ত ঈশ্বরের জন্য আমার একটি প্রার্থনা সঙ্গীত আছে| 9 আমি আমার শৈলস্বরূপ ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলব, “প্রভু, কেন আপনি আমায় ভুলে গেছেন?” কেন আমি আমার শত্রুদের নিষ্ঠুরতার জন্য ভুগব? 10 আমার শত্রুরা আমাকে অনবরত অপমান করে চলেছে এবং তারা আমাকে চরম আঘাত হেনে জিজ্ঞাসা করছে, “কোথায তোমার ঈশ্বর? তিনি কি এখনও তোমায় বাঁচাতে আসেন নি?” 11 কেন আমি অত দুঃখিত হবো? কেন আমি অবসন্ন হবো? আমাকে প্রভুর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে| আমি তবুও তাঁর প্রশংসা করবার একটা সুযোগ পাব| তিনি আমায় রক্ষা করবেন!
1 হে ঈশ্বর, একজন লোক আছে য়ে আপনার একনিষ্ঠ ভক্ত নয়| সে লোক অত্যন্ত ঠগ ও মিথ্যাবাদী| হে ঈশ্বর, আমাকে ঐ লোকটার হাত থেকে রক্ষা করুন! আমাকে প্রতিরক্ষা করুন এবং প্রমাণ করে দিন য়ে আমি নির্দোষ| 2 ঈশ্বর, আপনিই আমার দূর্গস্বরূপ! প্রভু, কেন আপনি আমায় ত্যাগ করে গেছেন? কেন আমি আমার পীড়নকারী শত্রুর হাতে এত বিপর্য়স্ত হবো? 3 হে ঈশ্বর, আপনার সত্য এবং আলো আমার ওপর বিকীর্ণ হোক্| আপনার আলো ও সত্য আমায় পথ দেখাবে| ঐগুলো আমায় আপনার পবিত্র পর্বতে নিয়ে যাবে| ঐগুলো আমাকে আপনার গৃহের পথ দেখাবে| 4 আমি ঈশ্বরের বেদীর কাছে যাবো| আমি সেই ঈশ্বরের কাছে যাবো, যিনি আমায় এত সুখী করেছেন| ঈশ্বর, হে আমার ঈশ্বর, আমি বীণা বাজিয়ে আপনার প্রশংসা করবো| 5 কেন আমি এত দুঃখিত? কেন আমি এত অবসন্ন? আমার ঈশ্বরের সাহায্যের জন্য প্রতীক্ষা করা উচিত্| আমি তবুও প্রভুর প্রশংসা করবার একটা সুযোগ পাব| তিনি আমায় রক্ষা করবেন!
1 ঈশ্বর, আমরা আপনার সম্পর্কে শুনেছি| আমাদের পিতৃপুরুষরা বলে গেছেন তাঁদের জীবদ্দশায় আপনি কি করেছেন| তাঁরা বলে গেছেন সুদূর অতীতে আপনি কী করেছেন| 2 ঈশ্বর আপনার পরাক্রমী শক্তিবলে এই ভূখণ্ড আপনি অন্য়ের কাছ থেকে নিয়ে আমাদের দিয়েছেন| সেই সব ভিন্দেশী লোকেদের আপনি একেবারে ধূলিস্যাত্ করে দিয়েছেন| এই ভূখণ্ড ছেড়ে য়েতে আপনি তাদের বাধ্য করেছেন| 3 আমাদের পিতৃপুরুষরা তাঁদের তরবারির জোরে এই ভূখণ্ড অধিকার করেন নি| তাঁদের বলিষ্ঠ বাহুর জোরে তারা জয়ী হন নি| এই সব হয়েছে কারণ, আপনি আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন| ঈশ্বর আপনার বিপুল শক্তি আমার পিতৃপুরুষদের রক্ষা করেছেন| কেন? কারণ আপনি তাদের ভালোবাসতেন! 4 হে ঈশ্বর, আপনিই আমার রাজা| আপনি আজ্ঞা দিন এবং যাকোবের লোকদের জয়ের পথে পরিচালিত করুন| 5 হে ঈশ্বর, আপনার সাহায্য নিয়েই আমরা আমাদের শত্রুকে পিছু হটিযে দেবো| আপনার ক্ষমতা নিয়ে আমরা আমাদের শত্রুদের ওপর অনায়াসে বিজয়ী হব| 6 আমি আমার তীর-ধনুকে আস্থা রাখি না| আমি জানি অন্ততঃ আমার তরবারি আমাকে রক্ষা করবে না| 7 ঈশ্বর আপনিই আমাদের শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছেন| আপনিই শত্রুদের লজ্জার মুখে ঠেলে দিয়েছেন| 8 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমরা আপনার প্রশংসা করেছি! চিরকাল আমরা আপনার প্রশংসা করবো! 9 কিন্তু হে ঈশ্বর আপনি আমাদের ত্যাগ করেছেন| আপনি আমাদের বিব্রত করেছেন| আপনি আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে আসেন নি| 10 আপনিই আমাদের শত্রুদের আমাদের ঠেলে সরিয়ে দেবার সুযোগ করে দিয়েছেন| শত্রুরা আমাদের সম্পদ নিয়ে গেছে| 11 আপনি আমাদের সেই মেষের মত ফেলে রেখেছিলেন যাদের বধ করতে নিয়ে যাওয়া হয়| সেই সব মেষের মত আমাদের পরিত্যাগ করেছেন| আমাদের আপনি বিদেশী জাতিগুলির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন| 12 হে ঈশ্বর, আপনি আপনার লোকদের নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছেন| এমনকি আপনি মূল্য নিয়েও কোন তর্ক করলেন না| 13 প্রতিবেশীদের কাছে আপনি আমাদের হাস্য়স্পদ করালেন| ওরা আমাদের নিয়ে হাসাহাসি ও মজা করে| 14 আমরা এখন লোকমুখে হাসির গল্পের মত| এমনকি সেই সব লোক যাদের নিজেদের কোন জাতি নেই তারাও আমাদের দেখে মাথা নাড়িযে হাসে| 15 আমি লজ্জায ডুবে রয়েছি| সারাদিন ধরে আমি আমার লজ্জাকেই দেখি| 16 যারা আমার প্রতি প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছুক, সেই সব শত্রুর উপহাস এবং অপমান থেকে আমি লজ্জায নিজেকে লুকিয়ে রাখি| 17 ঈশ্বর, আমরা আপনাকে ভুলি নি| তথাপি আপনি আমাদের প্রতি ঐসব করলেন| যখন আপনার চুক্তিতে আমরা স্বাক্ষর করেছিলাম, তখন আমরা আপনার সঙ্গে মিথ্যাচার করি নি! 18 ঈশ্বর, আমরা আপনার কাছ থেকে মুখ ঘুরিযে দূরে চলে যাই নি| আমরা আপনাকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হই নি| 19 কিন্তু হে ঈশ্বর, যেখানে শেযালের বাস, সেখানে আপনি আমাদের গুঁড়িযে ফেললেন| মৃত্যুর মত নীরন্ধ অন্ধকারে আপনি আমাদের ত্যাগ করে চলে গেছেন| 20 আমরা কি আমাদের ঈশ্বরের নাম ভুলে গিয়েছিলাম? আমরা কি অন্য কোন দেবতার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম? না! আমরা তা করি নি| 21 নিশ্চিতভাবে ঈশ্বর এইসব জানেন| আমাদের গভীরতম গোপন কথা পর্য়ন্ত তিনি জানেন| 22 ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমরা আপনার জন্য প্রাণ দিয়েছি! য়ে সব মেষদের কেটে ফেলা হবে আমরা তাদের মতই হয়েছি| 23 হে আমার প্রভু, উঠুন! কেন আপনি ঘুমাচ্ছেন? উঠুন! চিরদিনের জন্য আমাদের ত্যাগ করবেন না! 24 প্রভু, কেন আপনি আমাদের থেকে লুকোচ্ছেন? আপনি কি আমাদের দুঃখ যন্ত্রণা ভুলে গেছেন? 25 আমাদের ধূলোর মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে| ধূলোতে উদর ঠেকিযে আমরা পড়ে আছি| 26 ঈশ্বর, উঠুন এবং আমাদের সাহায্য করুন! আপনার চিরন্তণ প্রেম প্রদর্শন করে আমাদের উদ্ধার করুন!
1 রাজার জন্য যখন আমি এই গানটি লিখছি, আমার মন চমত্কার শব্দসমূহে ভরে যাচ্ছে| একজন দক্ষ লেখকের কলমে য়েমন শব্দ আসে, তেমনি ভাবে আমার মুখে শব্দগুলো আসছে| 2 য়ে কোন লোকের থেকেই তুমি সুন্দর! তুমি একজন দারুণ বক্তা| তাই ঈশ্বর সর্বদাই তোমাকে আশীর্বাদ করবেন! 3 তোমার তরবারি কোমরে বেঁধে নাও| তোমার গৌরবময় উর্দি পরে নাও| 4 তোমাকে বড় সুন্দর দেখায়! যাও, ন্যায় এবং সত্যের যুদ্ধে বিজয়ী হও| তোমার বলবান ডান হাত বিস্ময়কর কাজ করবার শিক্ষা পেয়েছে| 5 হে রাজা আপনার ধারালো তীরসমূহ আপনার শত্রুদের হৃদয়ের গভীরে বিদ্ধ হয়েছে, আপনার সামনেই তারা মাটিতে লুটিযে পড়বে| আপনি চিরকাল আপনার শত্রুদের ওপরে শাসন করবেন| 6 হে ঈশ্বর, আপনার সিংহাসন চিরবিরাজমান থাকবে! আপনি ন্যায়সঙ্গতভাবে শাসন করেন| 7 আপনি ন্যায় ভালোবাসেন এবং আপনি মন্দ ঘৃণা করেন| তাই ঈশ্বর, আপনার ঈশ্বর আপনাকে আপনার অনুগামীদের রাজা করেছেন| 8 আপনার পোশাক চন্দন, ঘৃতকুমারী ও দারুচিনির গন্ধে সুবাসিত| হাতির দাঁতের কাজ করা আপনার প্রাসাদ থেকে আপনার বিনোদনের জন্য সঙ্গীত ভেসে আসছে| 9 আপনার সভা-নন্দিনীরা সকলেই রাজকন্যা, রাণী আপনার ডানদিকে খাঁটি সোনার রাজমুকুট পরে বসে আছেন| 10 হে আমার নারী, আমার কথা শোন| খুব মন দিয়ে শোন, তাহলে তুমি বুঝতে পারবে| নিজের লোকজন এবং বাপের বাড়ীর কথা ভুলে যাও| 11 তাহলে রাজা তোমার রূপে খুশী হবেন| তিনি তোমার নতুন প্রভু হবেন| তাই তাঁকে তোমার সম্মান করা উচিত্| 12 সোর প্রদেশের ধনী লোকরা, তোমার সাক্ষাত্ পাবার জন্য তোমার কাছে মূল্যবান উপহার সামগ্রী নিয়ে আসবে| 13 সোনার সুতো দিয়ে বোনা তাঁর পোশাকে রাজকন্যাকে দেখতে মহিযসী লাগছে| 14 সেই সুন্দর পোশাক পরে যখন তিনি রাজার কাছে যাবেন তখন রাজার সভা-নন্দিনীরা তাঁর পিছন পিছন যাবে| 15 নাচে, গানে, আনন্দে মশগুল হয়ে তারা রাজপ্রাসাদের দিকে যাবে| 16 হে রাজা, আপনার পরে, রাজ্য শাসন করার জন্য আপনি অনেক পুত্র সন্তান পাবেন| যাতে আপনার পরে তারা রাজ্য শাসন করতে পারে| 17 আমি আপনার নাম চিরদিনের জন্য বিখ্য়াত করে যাবো| লোকে চিরকাল আপনার প্রশংসা করে যাবে!
1 ঈশ্বর আমাদের আশ্রয় এবং আমাদের শক্তির উত্স| সমস্যার সময় তাঁর মধ্যেই আমরা সব সাহায্য খুঁজে পাবো| 2 তাই যখন ভূমিকম্প হয়, যখন পর্বত ভেঙে সমুদ্রে পড়ে যায় তখন আমরা ভয় পাই না| 3 যখন সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে আর গর্জন করে এবং পর্বত যখন কেঁপে ওঠে, তখন আমরা ভয় পাই না| 4 একটি নদী আছে যার স্রোত ঈশ্বরের শহরে পরাত্পরের পবিত্র শহরে আনন্দ বয়ে আনে| 5 সেই শহরে ঈশ্বর আছেন| তাই কোনদিন তা ধ্বংস হবে না. সূর্য়োদযের আগেই ঈশ্বর সেখানে সাহায্যের জন্য উপস্থিত থাকবেন| 6 যখন প্রভু গর্জন করবেন, পৃথিবী ভেঙ্গে পড়বে, জাতিগুলি ভয়ে কাঁপবে এবং রাজত্বগুলি ভেঙে পড়বে| 7 সর্বশক্তিমান প্রভু আমাদের সঙ্গে আছেন| যাকোবের ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ স্থান| 8 প্রভু য়ে সব ক্ষমতা সম্পন্ন কাজ করেন তা দেখ| পৃথিবীতে তিনি য়ে সব বিস্ময়কর জিনিসগুলি করেছেন সেগুলো দেখ| 9 প্রভু এই পৃথিবীর য়ে কোন জায়গার য়ুদ্ধ থামিযে দিতে পারেন| তিনি একজন সৈনিকের ধনু ভেঙে দিতে পারেন| তিনি তাদের বল্লম চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারেন এবং তিনি তাদের রথও পুড়িয়ে দিতে পারেন| 10 ঈশ্বর বলেন, “লড়াই বন্ধ কর এবং আমিই য়ে ঈশ্বর এই শিক্ষা গ্রহণ কর! আমিই সেই জন, য়ে জাতিগণকে পরাজিত করি! আমিই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করি!” 11 সর্বশক্তিমান প্রভু আমাদের সঙ্গে আছেন| যাকোবের ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ স্থান|
1 হে পৃথিবীর জনগণ, তোমরা হাততালি দাও! মহানন্দে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ধ্বনি দাও! 2 পরাত্পর প্রভু বড় ভয়ঙ্কর| তিনি সারা পৃথিবীর মহান রাজা| 3 তিনি আমাদের অন্য লোকদের পরাজিত করতে সাহায্য করেন| ঐসব জাতিকে তিনি আমাদের অধীনস্থ করেছেন| 4 প্রভুই আমাদের জন্য নির্দিষ্ট ভূখণ্ড মনোনীত করেছেন| যাকোব যাকে তিনি ভালোবাসতেন, তাঁর জন্য তিনিই সুন্দর ভূখণ্ড মনোনীত করেছেন| 5 শিঙা ও ভেরীর শব্দের মাঝে প্রভু তাঁর সিংহাসনে আরোহণ করেন| 6 ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রশংসা কর| তাঁর প্রশংসা কর| আমাদের রাজার প্রশংসাগীত গাও| তাঁর প্রশংসা কর| 7 ঈশ্বরই সারা পৃথিবীর রাজা| তাঁরই প্রশংসা কর| 8 ঈশ্বর তাঁর পবিত্র সিংহাসনে বসেন| তিনি সব জাতিকে শাসন করেন| 9 সব জাতির নেতারা অব্রাহামের ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে একত্র হয়| পৃথিবীর সব জাতির সকল নেতা ঈশ্বরের অধীন| ঈশ্বর তাদের সবার ওপরে বিরাজ করেন!
1 প্রভু মহান! আমাদের ঈশ্বরের শহরে, তাঁর পবিত্র পর্বতে লোকরা নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর প্রশংসা করে| 2 ঈশ্বরের পবিত্র শহর একটি মনোরম উচ্চতায় অবস্থিত! তা সারা পৃথিবীর লোকদের সুখী করে! সিয়োন পর্বতই ঈশ্বরের প্রকৃত পর্বত|এটাই মহান রাজার নগর| 3 ঐ শহরের রাজপ্রাসাদগুলোর মধ্যে, ঈশ্বর নগর দুর্গ হিসাবে জ্ঞাত| 4 এক সময় কিছু রাজা একসঙ্গে মিলে এই শহর আক্রমণ করার পরিকল্পনা করলো| তারা সবাই দলে দলে শহরের দিকে এগিয়ে এলো| 5 কিন্তু যখন তারা এই শহর দেখলো, তখন তারা অভিভূত হয়ে গেল; তারা ভয় পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল! 6 ভয়ে পরিপূর্ণ হয়ে তারা কেঁপে উঠল| তারা প্রসব যন্ত্রণায় ব্যথিত একজন মহিলার মত কাঁপতে লাগল! 7 ঈশ্বর একটা দমকা পূবের বাতাস দিয়েই আপনি ওদের বড় জাহাজ ধ্বংস করে দিয়েছেন| 8 হ্যাঁ, আমরা আপনার পরাক্রমের কথা শুনেছি| আমরা আমাদের ঈশ্বরের নগরে এবং আমাদের সর্বশক্তিমান প্রভুর নগরে তা ঘটতেও দেখেছি| ঈশ্বর সেই নগরকে চিরদিনের জন্য দৃঢ় রাখবেন! 9 হে ঈশ্বর, আপনার মন্দিরে, আমরা আপনার প্রেমময় দয়ার কথা ধ্যান করি| 10 ঈশ্বর, আপনি বিখ্য়াত| সারা পৃথিবী জুড়ে লোকরা আপনার প্রশংসা করে| প্রত্যেকেই জানে আপনি কত ভাল| 11 ঈশ্বর, সিয়োন পর্বত সত্যই সুখী| আপনার সিদ্ধান্তের জন্য যিহূদার শহরগুলি আনন্দ করছে| 12 সিয়োন শহরে ঘুরুন| এই শহরকে দেখুন| দুর্গসমূহ গুনে দেখুন| 13 এর দেওয়ালগুলো দেখুন| সিয়োনের প্রাসাদগুলিকে মুগ্ধভাবে প্রশংসা করুন. তাহলে আপনি পরবর্তী প্রজন্মকে এ বিষযে বলতে পারবেন| 14 এই আমাদের ঈশ্বর চিরদিনের ঈশ্বর! চিরদিনের জন্য তিনি আমাদের পরিচালিত করবেন!
1 হে জাতিসকল, তোমরা শোন| পৃথিবীর সকল মানুষ, তোমরা শোন| 2 ধনী দরিদ্র প্রত্যেকটি লোক, তোমরা শোন| 3 আমি তোমাদের অত্যন্ত জ্ঞানের এবং চিন্তনের কথা কিছু বলবো| 4 আমি নিজে এই কাহিনীগুলি শুনেছি| এখন আমার বীণার সহযোগে গান গেয়ে, সেই বাণী আমি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবো| 5 যদি সংকট আসে কেন আমি ভীত হব? যদি দুষ্ট লোকেরা আমাকে ঘিরে থাকে এবং আমাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টায থাকে, আমি কেন ভয় পাবো? 6 কিছু লোক ভাবে তাদের শক্তি এবং সম্পত্তি তাদের রক্ষা করবে| প্রকৃতপক্ষে ওরা বোকা লোক| 7 কোন লোকরা, বন্ধু, তোমাকে বাঁচাতে পারবে না| লোকরা ঈশ্বরকে উত্কোচ দিতে পারে না| 8 নিজের জীবনকে কিনে ফেলার মত য়থেষ্ট টাকা একটা মানুষ কখনই পাবে না| 9 নিজের কবরের পচন থেকে শরীরকে রক্ষা করার মত এবং চিরকাল বেঁচে থাকার অধিকার কেনার মত টাকা একটা মানুষ কখনই পাবে না| 10 দেখ, জ্ঞানী লোকরা বোকা এবং অজ্ঞ লোকের মতই মরে| অন্য লোকরা তাদের সম্পদ নিয়ে যায়| 11 চিরদিনের জন্য ওদের কবর ওদের ঘর হয়| যদিও জীবিত অবস্থায় তাদের অনেক জমি ছিল| 12 লোকরা ধনী হয়ে য়েতে পারে কিন্তু চিরদিন তারা এখানে থাকবে না| আর পাঁচটা পশুর মত তারাও মরবে| 13 যারা তাদের সম্পদ নিয়ে তুষ্ট হবে, সেই বোকা লোকদের ঐ পরিণতিই হবে| 14 ওই সব লোক মেষের মত| ওদের কবরের মধ্যে রাখা হবে, মৃত্যু ওদের শাসন করবে| তারপর সেই সকালে সত্ লোকরাই জয়ী হবে, অন্যদিকে অহঙ্কারী লোকদের দেহ তাদের সুদৃশ্য ঘর থেকে বহু দূরে কবরের মধ্যে নীরবে পচে যাবে| 15 কিন্তু প্রভু আমায় মৃত্যু থেকে মুক্তি দেবেন এবং আমার জীবনকে রক্ষা করবেন| যখন তিনি আমাকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে যাবেন, তখন তিনি আমায় কবরের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করবেন! 16 মানুষ শুধুমাত্র ধনী বলে ওদের ভয় পেও না| তাদেরও ভয় পেও না যাদের খুব সুদৃশ্য বাড়ী আছে| 17 মৃত্যুর সময় তারা কোন জিনিসই সঙ্গে নিয়ে যাবে না| ঐসব সুন্দর জিনিসের মধ্যে একটাও সঙ্গে নিয়ে যাবে না| 18 একজন সম্পদশালী লোক তার ইহজীবনে য়ে সাফল্য লাভ করেছে, সে বিষযে সে নিজেকে অভিনন্দন জানাতে পারে| এমনকি নিজের জন্য সে যা করেছে, তার জন্য অন্য লোকও তার গুণগান করতে পারে| 19 কিন্তু এমন সময় আসবে যখন তাকে মরতে হবে, এবং মৃত্যুলোকে গিয়ে তাকে তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে থাকতে হবে| আর কোনদিন সে দিনের আলো দেখবে না| 20 লোকেরা খুব ধনশালী হতে পারে, কিন্তু তবু তারা প্রকৃত সত্য হৃদয়ঙ্গম করতে পারে না| কিন্তু নিছক একটা প্রাণীর মত তাদেরও মরতে হবে|
1 প্রভু, যিনি ঈশ্বরদেরও ঈশ্বর বয়ং তিনি কথা বলছেন| তিনি সূর্য়োদয থেকে সূর্য়াস্ত পর্য়ন্ত, অর্থাত্ এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্য়ন্ত সমগ্র পৃথিবীর মানুষকে চিত্কার করে ডাক দিচ্ছেন| 2 সিয়োন থেকে দীপ্তিমান ঈশ্বর অসীম সুন্দর! 3 আমাদের ঈশ্বর আসছেন এবং তিনি নীরব থাকবেন না| তাঁর সামনে সর্বগ্রাসী আগুন জ্বলছে| তাঁর চারদিকে প্রচণ্ড ঝড় বইছে| 4 যখন তিনি তাঁর লোকদের বিচার করেন তখন তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সাক্ষী থাকতে ডাকেন| 5 ঈশ্বর বলেন, “হে আমার অনুগামীরা আমার চারিদিকে এস| হে আমার ভক্তসকল, আমরা একে অন্য়ের সঙ্গে চুক্তি করেছি| 6 ঈশ্বর হলেন বিচারক, আকাশ তাঁর যথায়থ ধার্ম্মিকতার কথা ঘোষণা করে| 7 ঈশ্বর বলেন, “আমার লোকরা, আমার কথা শোন! হে ইস্রায়েলের লোকরা, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেব| আমিই ঈশ্বর, তোমাদের ঈশ্বর| 8 আমি তোমাদের বলি সম্পর্কে অভিয়োগ করছি না| তোমরা ইস্রায়েলের লোকেরা সর্বদাই আমার কাছে হোমবলি দিয়েছ| প্রতিদিনই তোমরা তা আমায় দিয়েছ| 9 তোমাদের ঘর থেকে আমি ষাঁড় নেব না| তোমাদের খোঁযাড় থেকে আমি ছাগলও নেব না| 10 ঐ পশুগুলো আমি চাই না| ইতিমধ্যেই জঙ্গলের সমস্ত পশুসমুহের আমি অধিকারী| হাজার হাজার পর্বতের ওপরের সমস্ত পশুগুলি ইতিমধ্যে আমার অধিকারে| 11 উচ্চতম পর্বতের প্রত্যেকটি পাখিকে আমি চিনি| পাহাড়ের প্রত্যেকটি চলমান বস্তুই আমার| 12 আমি ক্ষুধার্ত নই! যদি আমি ক্ষুধার্তও হতাম আমি তোমাদের কাছে আহার চাইতাম না| সারা পৃথিবী এবং তার মধ্যে যা যা আছে, আমিই পৃথিবীর এবং পৃথিবীর সমস্ত জিনিষের মালিক| 13 আমি ষাঁড়ের মাংস খাই না| আমি ছাগলের দেহ থেকে রক্ত পান করি না|” 14 অতএব, অন্যান্য ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য তোমাদের ঈশ্বরের কাছে দেয় ধন্যবাদ নৈবেদ্য নিয়ে এস এবং ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকার জন্য এসো এবং তোমাদের পরাত্পরের কাছে যা প্রতিশ্রুতি করেছিলে তোমরা তাঁকে তাই দাও| 15 ঈশ্বর বলেন, “যখন তুমি সংকটে পড়বে তখন আমায় ডেকো! আমি তোমাকে সাহায্য করবো! তারপর তুমি আমাকে সম্মান করতে পারবে|” 16 কিন্তু দুষ্ট লোকেদের ঈশ্বর বলেন, “তোমরা আমার বিধির সম্বন্ধে কথা বল| তোমরা আমার চুক্তির সম্বন্ধে কথা বল| 17 আমি যখন তোমাদের ভুল সংশোধন করে দিই, তখন কেন তোমরা তা ঘৃণা কর? আমি যা বলি কেন তোমরা তা উপেক্ষা কর? 18 তোমরা একটা চোরকে দেখ এবং তার সঙ্গে য়োগ দিতে ছুটে যাও| যারা ব্যভিচার করে তোমরা তাদের সঙ্গে বিছানায় ঝাঁপিযে পড়| 19 তোমরা মিথ্যা কথা বল এবং অশুভ ব্যাপারে কথা বল| 20 অন্য লোকদের সম্পর্কে তোমরা সব সময় খারাপ কথা বল| এমনকি তোমরা নিজের ভাইদের সম্পর্কেও খারাপ কথা বল| 21 তোমরা ঐসব বাজে কাজ করেছো| এবং আমি কিছু বলি নি| তাই তোমরা ভেবেছো আমিও ঠিক তোমাদের মত| তবে হ্যাঁ, আর বেশীদিন আমি চুপ করে থাকবো না! এটা আমি তোমার পরিষ্কার বুঝিয়ে দেবো এবং আমি সামনাসামনি তোমার সমালোচনা করবো! 22 তোমরা ঈশ্বরকে ভুলে গেছ| তাই আমি তোমাদের ছিন্নভিন্ন করার আগে যদি তোমরা উপলদ্ধি কর তো ভাল! আর যদি না বোঝ কেউ তোমাদের বাঁচাতে পারবে না! 23 তাই যদি কোন লোক আমায় ধন্যবাদ বলি দেয় তবে সে আমার সম্মান করে| যদি সে সত্ উপায়ে বাঁচে তাকে বাঁচানোর জন্য আমি আমার সমস্ত ক্ষমতা প্রদর্শন করবো|”
1 আপনার মহান প্রেমময় দয়ার জন্য এবং আপনার মহান করুণা দিয়ে আমার সমস্ত পাপসমূহ ধুয়ে মুছে দিন! 2 ঈশ্বর, আমার অপরাধ মুছে দিন. আমার সব পাপ ধুয়ে দিন| আবার আমায় পাপমুক্ত করে দিন! 3 আমি জানি আমি পাপ করেছি| সব সময় আমি সেই সব পাপ দেখতে পাই| 4 য়ে সব কাজকে আপনি গর্হিত বলেন, সেই সব কাজই আমি করেছি| ঈশ্বর আপনিই সেই ‘পরম এক’ যার বিরুদ্ধে আমি পাপ করেছি| এইসব কথা আমি স্বীকার করেছি যাতে মানুষ বোঝে আমি ভুল কিন্তু আপনি সঠিক| আপনার সব সিদ্ধান্ত যথায়থ নিরপেক্ষ| 5 আমি পাপের মধ্যে দিয়ে জন্মেছিলাম এবং পাপের মধ্যেই আমার মা আমায় গর্ভে ধারণ করেছিলেন| 6 হে ঈশ্বর, আপনি চান আমি প্রকৃতভাবে অনুগত হই| তাই আমার মনের গভীরে প্রকৃত জ্ঞান দান করুন| 7 এসবের দ্বারা আমার সব পাপ মুছে দিন, আমায় পবিত্র করে দিন| সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়ে আমাকে তুষারের থেকেও শুভ্র করে দিন! 8 আমায় সুখী করুন! আবার কি করে সুখী হতে পারবো তা বলে দিন| আপনি য়ে হাড়গুলো চূর্ণবিচূর্ণ করেছেন সেগুলো আবার সুখী হোক্! 9 আমার পাপের দিকে তাকাবেন না! আমার সব পাপ মুছে দিন! 10 ঈশ্বর আমার মধ্যে বিশুদ্ধ হৃদয় সৃষ্টি করুন! আমার আত্মাকে আবার শক্তিশালী করুন! 11 আমাকে দূরে ঠেলে দেবেন না! আমার কাছ থেকে আপনার পবিত্র আত্মাকে সরিয়ে নেবেন না! 12 আপনার সাহায্য আমাকে প্রচণ্ড সুখী করেছে! সেই আনন্দ আবার আমায় ফিরিয়ে দিন| আপনার নির্দেশ মান্য করার জন্য, আমার আত্মাকে শক্তিশালী করে দিন| 13 পাপীদের কেমন ধারা জীবনযাত্রা আপনি চান তা আমি ওদের শেখাবো এবং ওরা আপনার কাছে ফিরে আসবে| 14 ঈশ্বর, মৃত্যুর শাস্তি থেকে আমায় নিষ্কৃতি দিন| হে আমার ঈশ্বর, আপনিই সেই, যিনি আমায় রক্ষা করেন! আমার জন্য আপনি য়ে সব ভালো কাজ করেছেন, তা নিয়ে আমায় গান গাইতে দিন! 15 প্রভু আমার, আপনার সম্মানে আমি মুখ খুলবো এবং আপনার প্রশংসা গান গাইবো! 16 প্রকৃতপক্ষে আপনি কোন বলি চান না| যদি আপনি চাইতেন আমি তা আপনার উদ্দেশ্যে দিতাম| তাহলে কেন আপনাকে হোমবলি দেব যা আপনি প্রকৃত পক্ষে চান না! 17 ঈশ্বর য়ে বলি চান তা হল এক অনুতপ্ত আত্মা| হে ঈশ্বর, যদি একজন লোক নম্র হৃদয়ে ও বশ্যতার মন নিয়ে আপনার কাছে আসে তাকে আপনি ফিরিয়ে দেবেন না| 18 ঈশ্বর, সিয়োনের প্রতি প্রসন্ন ও ভাল ব্যবহার করুন| জেরুশালেমের প্রাচীর আবার গড়ে দিন. 19 তাহলে আপনি হোমবলি এবং সব উত্তম বলি উপভোগ করতে পারবেন| লোকরা আবার আপনার বেদীতে ষাঁড় বলি দেবে| 20
1 হে য়োদ্ধা, তোমার কৃত অন্যায় নিয়ে তুমি এত বড়াই কর কেন? তুমি অনবরত ঈশ্বরের সম্মানহানি ঘটাও| 2 তোমরা সবসময় অন্য লোকদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত কর| তোমাদের জিভ বিপজ্জনক, খুরের মতই ধারালো| তোমরা সর্বদাই মিথ্যা কথা বল এবং কাউকে না কাউকে ঠকাতে চেষ্টা কর! 3 ভালোর থেকে মন্দটাই তোমরা বেশী পছন্দ কর| তোমরা সত্যের থেকে মিথ্যা বলতেই বেশী পছন্দ কর| 4 তোমরা এবং তোমাদের মিথ্যাবাদী জিভ মানুষকে আঘাত করতে ভালোবাসে| 5 তাই ঈশ্বর চিরদিনের জন্য তোমাদের ধ্বংস করবেন! য়েমন করে একটা লোক একটা গাছকে মূলসহ উপড়ে ফেলে, একইভাবে ঈশ্বর তোমাদের বাড়ীথেকে তোমাদের বিচ্ছিন্ন করে দেবেন! 6 ভালো লোকরা তা দেখবে এবং ঈশ্বরকে ভয় ও শ্রদ্ধা করতে শিখবে| তারা তোমাদের দেখে উপহাস করে বলবে, 7 “দেখ, ঈশ্বরে য়ে ব্যক্তি নির্ভর করত না, তার কি অবস্থা হয়েছে| ঐ লোকটা ভেবেছিলো ওর সম্পদ এবং মিথ্যাচার ওকে রক্ষা করবে|” 8 কিন্তু আমি সবুজ জলপাই গাছের মত প্রভুর মন্দিরে বড় হয়ে উঠছি| আমি প্রভুর সত্য প্রেমে চিরদিন আস্থা রাখবো| 9 ঈশ্বর যা কিছু আপনি করেছেন তার জন্য চিরদিন আমি আপনার প্রশংসা করবো| আপনার ভক্তদের সামনে আমি আপনার নামের প্রশস্তি গীত করবো,কারণ সেটা খুব ভালো! 10
1 একমাত্র বোকারা ভাবে ঈশ্বর বলে কিছু নেই| এই ধরণের লোকরা দুর্নীতিগ্রস্ত, দুর্জন এবং ক্ষতিকর, ওরা ভাল কিছু করে না| 2 প্রকৃতপক্ষে একজন ঈশ্বর আছেন যিনি স্বর্গ থেকে আমাদের লক্ষ্য করছেন| ঈশ্বর সেইসব জ্ঞানী মানুষের খোঁজ করছেন যারা ঈশ্বরের খোঁজ করে! 3 কিন্তু প্রত্যেকে ঈশ্বরের থেকে মুখ ঘুরিযে নিয়েছে| প্রত্যেকটি লোকই খারাপ| কেউ ভাল কিছু করে না| না, একটা লোকও না| 4 ঈশ্বর বলেন, “ওই সব মন্দ লোকরা নিশ্চয় জানে সত্য কী! কিন্তু ওরা আমার কাছে প্রার্থনা করে না| দুষ্ট লোকরা এমনভাবে আমার লোকদের গ্রাস করে য়েন ওরা খাবার খাচ্ছে| 5 ঐসব মন্দ লোক এমন আতঙ্কিত হবে, য়ে আতঙ্ক ওরা আগে কখনও পায় নি! ঐ মন্দ লোকরা ঈস্রাযেলের শত্রু| ঈশ্বর ঐ মন্দ লোকদের বাতিল করে দিয়েছেন| তাই ঈশ্বরের লোকরা ওদের পরাজিত করবে এবং ওদের হাড়গুলো ঈশ্বর দ্বারা ছিন্নভিন্ন হবে| 6 ঈশ্বর, ইস্রায়েলের জন্য সিয়োন পর্বতে জয় নিয়ে আসুন! ঈশ্বর যখন তাঁর লোকদের নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনবেন তখন যাকোবের লোকরা য়েন আনন্দ করে|
1 ঈশ্বর, আপনার ক্ষমতা প্রযোগ করে আমায় রক্ষা করুন| আমাকে মুক্তি দিতে আপনার পরাক্রম কাজে লাগান| 2 ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শুনুন| আমি যা বলি তা শুনুন| 3 বিদেশী লোকরা যারা ঈশ্বরের উপাসনা করে না তারা আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছে| ঐসব শক্তিশালী লোকরা আমায় হত্যা করার চেষ্টা করছে| 4 দেখ, আমার ঈশ্বর আমায় সাহায্য করবেন| আমার প্রভু আমায় সহায়তা দেবেন| 5 যারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছে, আমার ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেবেন| ঈশ্বর আমার প্রতি বিশ্বস্ত হবেন এবং ঐসব লোকের বিনাশ করবেন| 6 হে ঈশ্বর, আমি আপনাকে স্বেচ্ছাবলি উত্সর্গ করব| প্রভু, আমি আপনার নামের প্রশংসা করবো কারণ সেটি এত ভালো! 7 আমি আপনার নামের প্রশংসা করব কারণ আমার সব সঙ্কট থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন| আমি আমার শত্রুদের পরাজিত হতে দেখেছি| 8
1 ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শুনুন| করুণার জন্য আমার য়ে প্রার্থনা তাকে উপেক্ষা করবেন না| 2 ঈশ্বর, দয়া করে আমার প্রার্থনা শুনুন এবং উত্তর দিন| আমাকে কোন্ জিনিস মানসিকভাবে যন্ত্রণা দেয় তা আপনার কাছে বলতে দিন| 3 আমি য়ে সব জিনিষে ভয় পাই আমার শত্রু সেইগুলো বলছে| ঐ দুষ্ট লোকটি আমাকে বলছে| আমার শত্রুরা যারা ক্রোধে উন্মত্ত তারা আমায় আক্রমণ করছে| ওরা আমার মাথার ওপর হুড়মুড় করে সংকটসমূহ এনে ফেলেছে| 4 আমার হৃদয়ের ভিতরে ঘাত-প্রতিঘাত হয়ে যাচ্ছে| মৃত্যু ভয়ে আমি ভীত হয়ে রয়েছি| 5 আতঙ্কে আমি কাঁপছি| আমি সন্ত্রস্ত| 6 আহা, আমার যদি ঘুঘু পাখীর মত ডানা থাকত! তাহলে আমি উড়ে গিয়ে একটা বিশ্রামের জায়গা খুঁজে বের করতাম| 7 আমি মরুভূমির অনেক দূরের কোন জায়গায় চলে য়েতাম| 8 আমি ছুট দিতাম| আমি পালিয়ে য়েতাম| এই সমস্যার ঝড় থেকে আমি পালিয়ে য়েতাম| 9 প্রভু আমার, ওদের মিথ্যা বলা আপনি বন্ধ করুন| আমি এই শহরে হিংসাত্মক ব্যাপার এবং লড়াই দেখছি| 10 এই শহরের প্রতিটি জায়গায় দিনরাত্রি জুড়ে অপরাধ ও ধ্বংসাত্মক কাজ লেগেই রয়েছে| 11 রাস্তাগুলোতে অপরাধ বেড়ে গেছে| লোকজন সর্বত্র মিথ্যা কথা বলছে এবং ঠকাচ্ছে| 12 এটা যদি আমার শত্রুরা আমাকে অপমান করতো, আমি সহ্য করতে পারতাম| এটা যদি আমার শত্রুরা আমায় আক্রমণ করতো আমি লুকোতে পারতাম| 13 কিন্তু হে আমার সখা, বন্ধু, আপনি বয়ং আমায় আক্রমণ করেছেন| 14 যখন আমরা একসঙ্গে ভীড়ের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরের মন্দিরে হেঁটে য়েতাম, তখন নিজেদের গোপন কথা একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করে কত নিকটভাবে কথা বলেছি| 15 য়েন অত্যন্ত বিস্ময়করভাবে মৃত্যু এসে আমার শত্রুদের গ্রাস করে! পৃথিবী ফাঁক হয়ে যাক্ এবং ওদের জীবন্ত গিলে ফেলুক! কেন? কারণ ওরা সবাই মিলে ভয়ঙ্কর সব কু-পরিকল্পনা করে| 16 সাহায্যের জন্য আমি ঈশ্বরকে ডাকবো, প্রভু অবশ্যই আমাকে উদ্ধার করবেন| 17 সন্ধ্যায, সকালে, দুপুরে আমি ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলি| আমি তাঁকে বলব, কোন্ বিষয় আমাকে ক্লেশগ্রস্ত করে এবং তিনি আমার কথা শোনেন| 18 আমি অনেক যুদ্ধ করেছি| সর্বদাই ঈশ্বর আমায় উদ্ধার করেছেন এবং নিরাপদে ফিরিয়ে এনেছেন| 19 ঈশ্বর, আমার কথা শোনেন| সেই অনন্ত রাজা অবশ্যই আমায় সাহায্য করবেন| 20 কিন্তু আমার শত্রুরা ঈশ্বরকে ভয় করে না বা তাঁকে শ্রদ্ধাও করে না| তারা তাদের হৃদয় এবং জীবন বদলাবে না| 21 ওরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং নিজের বন্ধুদের আক্রমণ করে| 22 আমার শত্রুরা খুব মসৃণভাবে কথা বলে, শান্তির কথা বললেও ওরা যুদ্ধের পরিকল্পনা করে| ওদের কথা মাখনের মত মসৃণ, কিন্তু ঐসব কথা ছুরির মতই কাটে| 23 তোমার য়োদ্ধাদের প্রভুর কাছে সমর্পণ কর তিনি তোমাদের যত্ন নেবেন| ঈশ্বর ভালো লোকদের পরাজিত হতে দেবেন না| 24 তোমার চুক্তির অঙ্গ অনুসারে, ঐসব খুনী ও মিথ্যাবাদীদের অর্ধেক জীবন শেষ হওয়ার আগেই হে ঈশ্বর আপনি ওদের কবরে পাঠান এবং আমার চুক্তির একটি অংশ হিসেবে আমি আপনাতে আস্থা রাখব|
1 ঈশ্বর, লোকে আমায় আক্রমণ করেছে তাই আমার প্রতি কৃপা করুন| ওরা সর্বক্ষণ ধরে আমার সঙ্গে য়ুদ্ধ করে চলেছে, আমায় তাড়া করে চলেছে| 2 আমার শত্রুরা ক্রমাগত আমায় আক্রমণ করে চলেছে| ওখানে অসংখ্য য়োদ্ধা আছে| 3 যখন আমি ভীত হয়ে পড়ি তখন আপনাতে আমার বিশ্বাস স্থাপন করি| 4 আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, তাই আমি ভয় পাই না| মানুষ আমার কী করবে! আমার প্রতি ঈশ্বরের শপথের জন্য আমি তাঁর প্রশংসা করি| 5 শত্রুরা সব সময় আমার কথাকে বিকৃত করে| সর্বদাই ওরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে| 6 আমাকে হত্যা করবার একটা পথ খুঁজে পাবার আশায ওরা একসঙ্গে লুকিয়ে থেকে আমার গতিবিধি লক্ষ্য করে| 7 ঈশ্বর, ওদের অন্য দেশে বিদায করে দিন| হে ঈশ্বর, ওদের দুষ্ট কাজের জন্য ওদের শাস্তি দিন| আপনার ক্রোধ দেখান এবং ঐসব জাতিদের পরাজিত করুন| 8 আপনি জানেন য়ে আমি মানসিকভাবে প্রচণ্ড বিপর্য়স্ত| আমি য়ে কত কেঁদেছি তাও আপনি জানেন| আপনি নিশ্চয় আমার চোখের জলের হিসেব রেখেছেন| 9 তাই যখন আমি আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি তখন আমার শত্রুদের পরাজিত করুন| আমি জানি আপনি তা করতে পারবেন| কারণ আপনিই আমার ঈশ্বর! 10 তাঁর প্রতিশ্রুতির জন্য আমি ঈশ্বরের প্রশংসা করি| আমার প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতির জন্য আমি প্রভুর প্রশংসা করি| 11 আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, তাই আমি ভয় পাই না| মানুষ আমার কী করবে! 12 ঈশ্বর, আমি আপনার কাছে বিশেষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা আমি পালন করবো| আমি আপনাকে আমার ধন্যবাদ উত্সর্গ নিবেদন করবো| 13 কেন? কারণ আপনি আমাকে মৃত্যু থেকে উদ্ধার করেছেন| পরাজয় থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন| তাই আমি প্রকাশ্য দিবালোকে ঈশ্বরের উপাসনা করবো যাতে কেবলমাত্র জীবিত লোকেরা দেখতে পায়|
1 ঈশ্বর, আমার প্রতি ক্ষমাশীল হোন| সদয় হোন কেননা আমার আত্মা আপনাতে বিশ্বাস রাখে| যখন সমস্যা আসে, তখন আমি সুরক্ষার জন্য আপনার কাছে আসি| 2 আমি পরাত্পর ঈশ্বরের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি| ঈশ্বর সম্পূর্ণভাবে আমার যত্ন নেন! 3 স্বর্গ থেকে তিনি আমায় সাহায্য দেন ও রক্ষা করেন| যারা আমায় অবদমিত করে তাদের তিনি পরাজিত করেন|আমার প্রতি ঈশ্বর তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা প্রদর্শন করেন| 4 আমার জীবন সঙ্কটাপন্ন| শত্রুরা আমার চারদিকে ঘিরে রয়েছে| ওরা মানুষখেকো সিংহদের মত; ওদের দাঁতগুলো তীরের মত তীক্ষ্ণ; ওদের জিভগুলো তরবারির মত ধারালো| 5 হে ঈশ্বর, আপনি স্বর্গের চেয়েও ওপরে| আপনার মহিমা পৃথিবীকে আবৃত করে| 6 আমার শত্রুরা আমার জন্য একটা ফাঁদ পেতেছে| ওরা আমায় ফাঁদে ফেলতে চাইছে| ওরা আমার পথে একটা গভীর গর্ত খুঁড়েছে যাতে আমি ওর মধ্যে পড়ে যাই, কিন্তু ওরা নিজেরাই তার মধ্যে পড়ে গেছে! 7 কিন্তু ঈশ্বর আমায় নিরাপদে রাখবেন| তিনি আমায় সাহস দেবেন| আমি তাঁর প্রশংসা করবো| 8 হে আমার আত্মা, জেগে ওঠো! হে সারেঙ্গী, হে বীণা, তোমাদের সঙ্গীত শুরু কর! এস আমরা উষাকালকে জাগিয়ে তুলি| 9 আমার প্রভু সকলের কাছে আমি আপনার প্রশংসা করি| সব জাতির কাছেই আমি আপনার প্রশংসা করি| 10 আপনার প্রকৃত ভালোবাসা, আকাশের উচ্চতম মেঘের থেকেও উচ্চ! 11 হে ঈশ্বর, স্বর্গকেও অতিক্রম করে যাও| আপনার মহিমা পৃথিবীকে আবৃত করুক|
1 ওহে বিচারকগণ, তোমরা তোমাদের বিচারে ন্যায় সঙ্গত নও| তোমরা সত্ভাবে লোকের বিচার করছো না| 2 না, তোমরা শুধুই খারাপ কাজ করার কথা ভাবো| এই দেশে তোমরা হিংসাত্মক অপরাধসমূহ কর| 3 সেই সব মন্দ লোক যখনই জন্মায় তখন থেকেই ওরা ভুল কাজ করতে শুরু করে| জন্ম থেকেই ওরা মিথ্যাবাদী| 4 ওদের ক্রোধ সাপের বিষের মতই ভয়ঙ্কর এবং বধির গোখরে সাপের মত| ওরা সত্য কথা শুনতে অস্বীকার করে| 5 গোখরে সাপরা সাঁপুড়ের বীণের সুর বা গান শুনতে পায় না| ঐসব মন্দ লোকরাও সেইসব সাপের মত, কারণ তারা কু-চক্রান্ত করে| 6 প্রভু, ঐ লোকগুলো সিংহের মত| তাই হে প্রভু, ওদের দাঁতগুলো ভেঙে দিন| 7 নর্দমা দিয়ে য়েমন জল গড়িযে যায়, ঐ লোকগুলোও য়েন সেভাবেই অদৃশ্য হয়ে যায়| পথের ধারে আগাছার মত ওরা য়েন বিনষ্ট হয়| 8 ওরা শামুকের মত হোক, নড়বার সময় য়েন গলে গলে যায়| ওরা য়েন জন্ম-মৃত শিশুর মত কোনদিন দিনের আলো না দেখে| 9 য়ে কাঁটাঝোপকে জ্বালানী হিসেবে বালিয়ে রান্নার পাত্র গরম করা হয় ওরা য়েন সেই কাঁটাঝোপের জ্বালানীর মত বিনষ্ট হয়| 10 একজন সত্ লোক তখন খুশী হবে যখন সে দেখবে তার প্রতি করা অন্যায় কাজের জন্য মন্দ লোকরা শাস্তি পাচ্ছে| সে সেই রকম সৈনিকের মত হবে য়ে তার সমস্ত শত্রুদের পরাজিত করেছে| 11 যখন এটা ঘটবে, তখন লোকে বলবে: “সত্ লোকেরা সত্যিই পুরস্কৃত| সত্যই একজন ঈশ্বর আছেন যিনি পৃথিবীর বিচার করেন|”
1 ঈশ্বর আমাকে আমার শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করুন| যারা আমার সঙ্গে লড়াই করতে এসেছে তাদের পরাজিত করতে আমায় সাহায্য করুন| 2 সেই সব লোক যারা মন্দ কাজ করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| ঐসব খুনীদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| 3 দেখুন শক্তিশালী লোকরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে| যদিও আমি কোন পাপ বা অপরাধ করিনি তবুও ওরা আমায় হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করছে| 4 আমি কোন ভুল করি নি কিন্তু আমাকে আক্রমণ করার জন্য ওরা এখানে ছুটে এসেছে| প্রভু, উঠুন এবং এসে আমায় সাহায্য করুন| দেখুন কি ঘটছে| 5 প্রভু, আপনিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর! উঠুন এবং ঐসব লোককে শাস্তি দিন| ঐসব বদ বিশ্বাসঘাতকদের প্রতি এতটুকু দয়া দেখাবেন না| 6 ঐসব লোকরা কুকুরের মত যারা সন্ধ্যা বেলায় ক্রুদ্ধ গর্জন করতে করতে এবং রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে শহরে আসে| 7 ওদের হুমকি ও অপমান শুনুন| ওরা ঐসব নির্মম কথাগুলো বলছে| কিন্তু ওরা খেয়াল করে না কারা তা শুনছে| 8 প্রভু ওদের আপনি উপহাস করুন| ওদের সকলকে বিদ্রূপ করুন| 9 আমি আপনার উদ্দেশ্যে আমার বন্দনা গান করবো| ঈশ্বর, উঁচু পর্বতে আপনিই আমার নিরাপদ স্থান| 10 ঈশ্বর আমায় ভালোবাসেন এবং তিনি আমাকে জয়ী হতে সাহায্য করবেন| তিনি আমায় শত্রুদের পরাজিত করতে সাহায্য করবেন| 11 হে ঈশ্বর, ওদের নিছক হত্যা করবেন না, নতুবা আমার লোকেরা তাদের ভুলে য়েতে পারে| কে তাদের জয় এনে দিয়েছে? হে আমার প্রভু এবং রক্ষাকারী, আপনার ক্ষমতা বলে ওদের আপনি পরাজিত করুন| ছত্রভঙ্গ করুন| 12 ঐসব মন্দ লোক মিথ্যা কথা বলে ও অভিশাপ দেয়| ওরা যা বলেছে তার জন্য ওদের শাস্তি দিন| ওদেরই দম্ভের ফাঁদে ওদের পড়তে দিন| 13 আপনার ক্রোধে ওদের ধ্বংস করে দিন| ওদের সম্পূর্ণরূপে বিনাশ করুন! সারা পৃথিবীকে বুঝতে দিন য়ে বয়ং ঈশ্বর ইস্রায়েলে শাসন করছেন! 14 ঐসব মন্দ লোক, ঘেউ ঘেউ করা ভ্রাম্যমান কুকুরের মত, রাতের বেলায় শহরে এসেছে| 15 তারা কিছু খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়াবে, কিন্তু কোন খাবার পাবে না, রাতে বিশ্রাম করবার জন্যও কোন জায়গা তারা খুঁজে পাবে না| 16 কিন্তু সকালে, আমি আপনার প্রশংসা গান গাইবো| আমি আপনার প্রেমে আনন্দ উল্লাস করবো| কেন? কারণ উচ্চ পর্বতে আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| সংকট এলে আমি আপনার কাছে ছুটে য়েতে পারবো| 17 আপনার প্রশংসা করে আমি গান গাইবো| কেন? কারণ উচ্চ পর্বতে আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| আপনি সেই ঈশ্বর যিনি আমায় ভালোবাসেন!
1 হে ঈশ্বর, আপনি আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ ছিলেন| আপনি আমাদের বাতিল করে দিয়েছেন, আমাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন| দয়া করে আমাদের পুনরুদ্ধার করুন| 2 আপনিই ভূমিকম্প করিয়েছেন এবং পৃথিবীকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন| আমাদের পৃথিবী টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ছে| দয়া করে একে ঠিক করুন| 3 আপনি আপনার লোকদের বহু সমস্যা দিয়েছেন| আমরা নেশাগ্রস্ত লোকদের মত টলমল করতে করতে পড়ে যাচ্ছি| 4 যারা আপনাকে উপাসনা করে তাদের আপনি সতর্ক করেছেন| এখন তারা শত্রুদের হাত থেকে পালিয়ে য়েতে পারে| 5 আপনার পরাক্রম প্রযোগ করে আমাদের উদ্ধার করুন! আমার প্রার্থনার উত্তর দিন এবং যাদের আপনি ভালোবাসেন তাদের রক্ষা করুন! 6 ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে কথা বলেছেন এবং এতে আমি খুব খুশী! তিনি বলেছেন, “আমার লোকদের সঙ্গে আমি এই ভূখণ্ড ভাগ করে নেব| আমি ওদের শিখিম দেবো| আমি ওদের সুক্কোতের উপত্যকা দেবো| 7 গিলিয়দ এবং মনঃশি আমার হবে| ইফ্রযিম আমার মাথার শিরস্ত্রাণ হবে| যিহূদা হবে আমার বিচারদণ্ড| 8 মোযাব দেশ আমার পা ধোযার গামলা হবে| ইদোম আমার জুতো বহনকারী ক্রীতদাস হবে| আমি পলেষ্টীয়দের পরাজিত করে বিজয় উল্লাসে চিত্কার করে উঠবো! 9 কিন্তু ঈশ্বর, আপনি আমাদের ত্যাগ করলেন! আমাদের সৈন্যদের সঙ্গে আপনি গেলেন না! তাই কে আমাকে ঐ দৃঢ় ও সুরক্ষিত শহরে নিয়ে যাবে? ইদোমের বিরুদ্ধে য়ুদ্ধ করতে কে আমায় নেতৃত্ব দেবে? 10 11 ঈশ্বর, শত্রুদের পরাজিত করতে আমাদের সাহায্য করুন! জনগণ আমাদের সাহায্য করতে পারে না! 12 একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের শক্তিশালী করতে পারেন| একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের শত্রুদের পরাজিত করতে পারেন! 13
1 হে ঈশ্বর, আমার প্রার্থনা সঙ্গীত শুনুন| আমার প্রার্থনা শুনুন| 2 আমি যেখানেই থাকি, য়তই দুর্বল হই না কেন, আমি সাহায্যের জন্য আপনাকে ডাকবো! আমাকে বহু বহু উঁচুতে নিরাপদ স্থানে নিয়ে চলুন| 3 আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল! আপনিই সেই শক্তিশালী দুর্গ যা আমাকে আমার শত্রুদের থেকে রক্ষা করে| 4 আমি চিরদিনের জন্য আপনার তাঁবুতে থাকতে চাই| যেখানে আপনি আমায় সুরক্ষিত করবেন আমি সেখানেই লুকিয়ে থাকতে চাই| 5 হে ঈশ্বর, আপনাকে যা দেবার প্রতিশ্রুতি আমি করেছি তা আপনি শুনেছেন| কিন্তু আপনার অনুগামীদের যা আছে, তার প্রতিটি জিনিসই আপনার কাছ থেকে এসেছে| 6 রাজাকে দীর্ঘ জীবন দিন! তাকে চিরদিন জীবিত থাকতে দিন! 7 তাকে চিরদিন ঈশ্বরের সঙ্গে বেঁচে থাকতে দিন! আপনার প্রকৃত ভালোবাসা দিয়ে তাকে আপনি রক্ষা করুন| 8 আমি চিরকাল আপনার নামের প্রশংসা করবো| আমি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, প্রতিদিনই আমি তা পালন করবো|
1 যাই ঘটুক না কেন, ঈশ্বর আমায় উদ্ধার করবেন এই আশায আমার আত্মা ধৈর্য়্য় ধরে অপেক্ষা করছে| আমার পরিত্রাণ একমাত্র তাঁর কাছ থেকেই আসবে| 2 হয়তো আমার অনেক শত্রু আছে, কিন্তু ঈশ্বরই আমার দুর্গ| ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেন| উঁচু পর্বতে ঈশ্বরই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| আমার মস্ত বড় শত্রুও আমায় পরাজিত করতে পারবে না| 3 কতক্ষণ তোমরা আমায় আক্রমণ করবে? আমি একটা ঝুঁকে পড়া দেওয়ালের মত| আমি একটা ভগ্ন প্রায় বেড়ার মত| 4 আমার গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও ঐসব লোক আমার বিনাশের পরিকল্পনা করছে| আমার সম্পর্কে মিথ্যা বলে ওরা আনন্দ পায়| জনসমক্ষে ওরা আমার সম্পর্কে ভাল কথা বলে কিন্তু গোপনে আমায় অভিশাপ দেয়| 5 আমাকে রক্ষা করবার জন্য আমার আত্মা ধৈর্য়্য় ধরে শুধুমাত্র ঈশ্বরের অপেক্ষা করছে! ঈশ্বর আমার একমাত্র আশা| 6 ঈশ্বরই আমার দুর্গ| ঈশ্বরই আমায় রক্ষা করেন| উঁচু পর্বতে ঈশ্বরই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| 7 আমার মহিমা ও জয় ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে| তিনিই আমার দৃঢ় দুর্গ| তিনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| 8 হে লোক সকল, সর্বদাই ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখো| তোমাদের সব সমস্যা ঈশ্বরকে বল| ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল| 9 প্রকৃতপক্ষে লোকজন কোন সাহায্য করতে পারে না| প্রকৃত সাহায্যের জন্য তোমরা ওদের ওপর নির্ভর করতে পারবে না| ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনা করলে, ওরা একটি বাতাসের ফুত্কার ছাড়া আর বেশী কিছু নয়| 10 জোর করে কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে তোমার ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস কর না| একদম ভেবো না য়ে চুরি করে কিছু নিয়ে লাভবান হবে| যদি তুমি ধনী হও, তবে মোটেই বিশ্বাস করো না সম্পদ তোমায় সাহায্য করবে| 11 ঈশ্বর বলেন, একটাই মাত্র জিনিস আছে যার ওপর তুমি নির্ভর করতে পারো (এবং আমি তা বিশ্বাস করি)| “একমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকেই শক্তি আসে!” 12 হে আমার প্রভু, আপনার ভালোবাসাই প্রকৃত ভালোবাসা| লোকে য়ে কাজ করে তার জন্যই আপনি তাকে পুরস্কার বা শাস্তি দেন|
1 ঈশ্বর, আপনিই আমার ঈশ্বর| আমি আপনাকে ভীষণভাবে চাই| রৌদ্রদগ্ধ শুকনো জমির মত, আমার দেহ ও আত্মা আপনার জন্য তৃষ্ণার্ত হয়ে রয়েছে| 2 হ্যাঁ, আপনার মন্দিরে আমি আপনাকে দেখেছি| আপনার শক্তি এবং মহিমাও আমি দেখেছি| 3 আপনার ভালোবাসা জীবনের চেয়েও উত্তম| আমার ওষ্ঠদ্বয আপনারই প্রশংসা করে| 4 হ্যাঁ, আমার এ জীবনে আমি আপনারই প্রশংসা করবো| আপনার পবিত্র নামে আমি দু-হাত তুলে প্রার্থনা করবো| 5 আমি এমনই সন্তুষ্ট হব য়েন আমি সব থেকে সেরা খাবার খেয়েছি| এবং আমার আনন্দপ্লুত মুখ দিয়ে আমি আপনারই প্রশংসা করবো| 6 যখন আমি বিছানায় শুতে যাবো তখন আমি আপনাকে স্মরণ করবো| মধ্যরাত্রে আমি আপনার ধ্যান করব| 7 আপনি সত্যিই আমাকে সাহায্য করেছেন! আপনি যখন আমায় সুরক্ষা দেন তখন আমি আনন্দোল্লাস করি! 8 আমার আত্মা আপনাকে জড়িয়ে ধরে থাকে| আপনার ডান হাত আমাকে সহায়তা দেয়| 9 যারা আমায় মেরে ফেলতে ইচ্ছা করে ওরা সবাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| ওরা ওদের কবরে তলিযে যাবে| 10 তরবারির দ্বারা ওদের মৃত্যু হবে| বুনো কুকুর ওদের মৃতদেহ ছিঁড়ে খাবে| 11 কিন্তু রাজা দায়ূদ তাঁর ঈশ্বরকে নিয়েই সুখী হবে এবং যারা তাঁকে মান্য করে তারাই ঈশ্বরের প্রশংসা করবে| কেন? কারণ তিনি সব মিথ্যাবাদীকে পরাজিত করেছেন|
1 ঈশ্বর, আমার কথা শুনুন| আমার শত্রু আমায় শাসাচ্ছে| আমাকে তার হাত থেকে রক্ষা করুন! 2 শত্রুর গোপন চক্রান্ত থেকে আমায় রক্ষা করুন| ঐ মন্দ লোকেদের কাছ থেকে আমায় লুকিয়ে রাখুন| 3 ওরা আমার সম্পর্কে খারাপ ও মিথ্যা কথা বলেছে| ওদের জিভ তীক্ষ্ণ তরবারির মত, ওদের তিক্ত কথা য়েন বিভক্ত তীরের মত| 4 ওদের গোপন ড়েবা থেকে ওরা নির্ভয়ে এবং অতর্কিতে সরল ও সত্ মানুষদের দিকে তীর ছোঁড়ে| 5 মন্দ কাজে ওরা একে অন্যকে উত্সাহিত করে| ওরা ওদের ফাঁদ পাতার কথাবার্তা বলে| ওরা একে অন্যকে বলে, “কেউ এই ফাঁদ দেখতে পাবে না!” 6 ওরা ওদের ফাঁদ লুকিয়ে রেখেছে| ওরা জীবন্ত বলিসমূহের সন্ধানে আছে| মানুষ খুব চতুর হতে পারে, তাই ওরা কি ফন্দি করছে তা জানা মুস্কিল|) 7 কিন্তু ঈশ্বরও ওদের দিকে “তীর” নিক্ষেপ করতে পারেন! এটা জানতে পারার আগেই দুষ্ট লোকরা জখম হয়ে যাবে| 8 মন্দ লোকরা অন্য লোকের খারাপ করারই চিন্তা করে| কিন্তু ঈশ্বর ওদের দুষ্ট পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারেন এবং ঐ কু-পরিকল্পনা ওদের ওপরেই ঘটাতে পারেন| তখন যারাই ওদের দেখবে তারা বিস্মযে অভিভূত হয়ে মাথা নাড়াবে| 9 লোকরা দেখবে ঈশ্বর কি করেছেন| তাঁর সম্পর্কে তারা অন্য লোকদের বলবে| তখন প্রত্যেকে ঈশ্বর সম্পর্কে আরও বেশী জানতে পারবে| ওরা তাঁকে ভয় ও শ্রদ্ধা করতে শিখবে| 10 একজন ভালো লোক আনন্দের সঙ্গে প্রভুর সেবা করে এবং তাঁর ওপর নির্ভর করে| একজন ভাল ও সত্ লোক ঈশ্বরকে তার অন্তর থেকে প্রশংসা করে|
1 সিয়োনে বিরাজমান হে ঈশ্বর, আমি আপনার প্রশংসা করি| আপনাকে যা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা আমি দিয়েছি| 2 আপনি য়ে সব কাজ করেছেন সে সম্পর্কে আমরা বলে থাকি| আপনিও আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন| যারা আপনার কাছে আসে, তাদের প্রত্যেকের প্রার্থনা আপনি শোনেন| 3 যখন আমাদের পাপের ভার অতিরিক্ত বেড়ে যায়, তখন আপনি সেই পাপ ভার লাঘব করেন| 4 ঈশ্বর, আপনিই আপনার লোকদের মনোনীত করেন| আপনার মন্দিরে এসে আপনার উপাসনা করার জন্য আপনিই আমাদের মনোনীত করেছেন| আপনার মন্দিরে, আপনার পবিত্র প্রাসাদে, য়ে সব মনোরম জিনিস আছে, তাই দিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হব! 5 ঈশ্বর আপনি আমাদের রক্ষা করেন| ভালো লোকরা আপনার কাছে প্রার্থনা করে এবং আপনি তাদের প্রার্থনার উত্তর দেন| তাদের জন্য আপনি আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন| সারা পৃথিবীতে লোকরা আপনাতে আস্থা রাখে| 6 ঈশ্বর তাঁর শক্তি দিয়ে পর্বত সৃষ্টি করেছেন| আমাদের চারপাশে আমরা তাঁর শক্তিকে দেখতে পাই| 7 উত্তাল সমুদ্রকে ঈশ্বর শান্ত করেছেন| ঈশ্বরই পৃথিবীতে “জনসমুদ্রসমূহ” সৃষ্টি করেছেন| 8 আপনি য়েসব বিস্ময়কর জিনিস করেন, তাতে সারা পৃথিবীর লোক বিস্ময় বিহ্বল হয়েছে| সূর্য়োদয় ও সূর্য়াস্ত আমাদের প্রচণ্ড সুখী করে! 9 আপনিই জমির যত্ন নেন| আপনিই জমিতে সেচ দেন এবং তাতে ফসল ফলান| হে ঈশ্বর, আপনিই সেই জন, যিনি নদী ও খালগুলি জলে ভরে দিয়েছেন এবং ফসল ফলাতে সাহায্য করেছেন| 10 হাল দেওয়া জমিতে আপনিই বৃষ্টি ঝরান| আপনিই জমিকে জল দিয়ে সিক্ত করেন| আপনিই বৃষ্টির জল দিয়ে জমিকে নরম করেন এবং আপনিই কচি চারা জন্মাতে দেন| 11 আপনি ভালো ফসল দিয়ে নতুন বছর শুরু করেন| আপনি বিভিন্ন ফসল দিয়ে গাড়ীগুলি ভরে দেন| 12 পাহাড় ও মরুভূমি ঘাসে আচ্ছাদিত হয়ে আছে| 13 চারণ ভূমিগুলো মেষে ভরে রয়েছে| উপত্যকাগুলো ফসলে পরিপূর্ণ হয়েছে| প্রত্যেকটি মানুষ আনন্দে ধ্বনি দিচ্ছে এবং গান গাইছে|
1 সমগ্র পৃথিবী উচ্চ স্বরে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আনন্দধ্বনি কর! 2 তাঁর মহিমাময় নামের প্রশংসা কর! প্রশংসা গান গেয়ে তাঁর নামের সম্মান কর! 3 ঈশ্বরকে বল তাঁর কীর্তিগুলি কি অনবদ্য! হে ঈশ্বর, আপনার পরাক্রমের মহত্বে আপনার শত্রুরা তাদের মাথা আপনার কাছে অবনত করে| ওরা আপনার ভয়ে ভীত! 4 সারা পৃথিবী য়েন আপনার উপাসনা করে| প্রত্যেকে য়েন আপনার নামের প্রশংসা করে| 5 ঈশ্বর যা যা করেছেন তার দিকে দেখ! এই সব জিনিস আমাদের বিস্ময় বিহ্বল করে| 6 ঈশ্বর, সমুদ্রকে শুষ্ক ভূমিতে পরিণত করেছেন| আনন্দে উল্লাস করতে করতে তাঁর লোকরা নদী হেঁটে পারাপার করেছে| 7 ঈশ্বর, তাঁর পরাক্রমে পৃথিবী শাসন করছেন| সর্বত্রই তিনি লোকের ওপর নজর রাখছেন| কেউই তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হতে পারবে না| 8 হে জনগণ, আমাদের ঈশ্বরের প্রশংসা কর| তাঁর কাছে উচ্চস্বরে প্রশংসা গান গাও| 9 ঈশ্বর আমাদের জীবন দিয়েছেন| ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করেন| 10 মানুষ য়েমন করে আগুনে রূপো পরীক্ষা করে, তেমন করে ঈশ্বর আমাদের পরীক্ষা করেছেন| 11 ঈশ্বর, আপনি আমাদের ফাঁদে ফেলেছেন| আপনি আমাদের ওপর ভারি বোঝা চাপিয়েছেন| 12 আপনি আমাদের শত্রুদের আমাদের অতিক্রম করতে দিয়েছেন| আগুন ও জলের ভেতর দিয়ে আপনি আমাদের টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গেছেন| কিন্তু আপনি আমাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে এসেছেন| 13 তাই আমি আপনার মন্দিরে বলি নিয়ে যাবো| যখন আমি সংকটের মধ্যে ছিলাম আমি আপনার সাহায্য চেয়েছিলাম| আমি আপনার কাছে অনেক প্রতিশ্রুতি করেছিলাম| যা আমি প্রতিশ্রুতি করেছিলাম, এখন তা আমি আপনাকে দিচ্ছি| 14 15 আমি আপনার কাছে পাপমোচনের নৈবেদ্য উত্সর্গ করি| আমি আপনাকে মেষসহ ধূপ উত্সর্গ করি| আমি আপনাকে ছাগল ও ষাঁড়সমূহ উত্সর্গ করি| 16 তোমরা যারা ঈশ্বরের উপাসনা করছ তারা আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বলবো ঈশ্বর আমার জন্য কি করেছেন| 17 আমি তাঁর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম, আমি তাঁর প্রশংসা করেছিলাম| 18 আমার হৃদয় নির্মল ছিল তাই আমার প্রভু আমার কথা শুনেছেন| 19 ঈশ্বর আমার কথা শুনেছেন| ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শুনেছেন| 20 ঈশ্বরের প্রশংসা কর! ঈশ্বর আমার দিক থেকে বিমুখ হন নি, তিনি আমার প্রার্থনা শুনেছেন| আমার প্রতি তিনি তাঁর ভালোবাসা দেখিয়েছেন!
1 হে ঈশ্বর, আমাদের কৃপা করুন এবং আশীর্বাদ করুন| অনুগ্রহ করে আমাদের গ্রহণ করুন! 2 হে ঈশ্বর, পৃথিবীর সমস্ত লোক য়েন আপনার সম্পর্কে জানতে পারে| প্রত্যেকটা জাতি য়েন দেখতে পায় কেমন করে আপনি মানুষকে বাঁচান| 3 হে ঈশ্বর, লোকরা য়েন আপনার প্রশংসা করে! য়েন সমস্ত লোক আপনার প্রশংসা করে| 4 সমস্ত জাতি আহ্লাদিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করুন! কেন? কারণ আপনি ন্যায়সঙ্গত ভাবে লোকের বিচার করেন| এবং আপনি প্রত্যেকটি জাতিকে শাসন করেন| 5 হে ঈশ্বর, লোকরা য়েন আপনার প্রশংসা করে! সকল লোক য়েন আপনার প্রশংসা করে| 6 হে ঈশ্বর, আমাদের ঈশ্বর, আমাদের আশীর্বাদ করুন| আমাদের জমি য়েন আমাদের ভাল আবাদ দেয়| 7 ঈশ্বর য়েন আমাদের আশীর্বাদ করেন| পৃথিবীর সমস্ত লোক য়েন ঈশ্বরকে ভয় ও শ্রদ্ধা করে|
1 ঈশ্বর, আপনি উঠুন এবং শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করুন| তাঁর সব শত্রুরা য়েন তাঁর থেকে দূরে পালিয়ে যায়| 2 ধোঁযা য়েমন বাতাসে উড়ে যায়, তেমনি আপনার শত্রুরা য়েন ছত্রভঙ্গ হয়| মোম য়েমন ভাবে আগুনে গলে যায়, তেমনই করে য়েন আপনার শত্রুরাও ধ্বংস হয়| 3 কিন্তু ধার্ম্মিক লোকরা সুখী| ধার্ম্মিক লোকরা ঈশ্বরের সঙ্গে আনন্দোল্লাসে সময় কাটাবে| ধার্ম্মিক লোকরা নিজেদের উপভোগ করতে পারবে এবং প্রচণ্ড সুখী হবে! 4 ঈশ্বরের উদ্দেশ্য গান গাও| তাঁর নামে প্রশংসা কর| ঈশ্বরের জন্য পথ প্রস্তুত কর| মরুভূমিতে তিনি রথে চড়ে আসছেন| তাঁর নাম “য়াঃ|” তাঁর নামের প্রশংসা কর! 5 তাঁর পবিত্র মন্দিরে তিনিই অনাথের পিতার মত| ঈশ্বর বিধবাদের যত্ন নেন| 6 সঙ্গীহীন লোককে ঈশ্বর গৃহ দেন; ঈশ্বর তাঁর লোকদের কারাগার থেকে মুক্ত করেন| তারা ভীষণ সুখী| কিন্তু য়ে লোকরা ঈশ্বরের বিরোধিতা করবে তারা রৌদ্র দগ্ধ মরুভূমিতে বাস করবে| 7 ঈশ্বর, আপনিই আপনার লোকদের মিশর থেকে বেরিয়ে আসতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| আপনিই মরুভূমিতে হেঁটে গিয়েছিলেন| 8 এবং ভূমি কেঁপে উঠেছিল| ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, বয়ং সীনয় পর্বতে নেমে এলেন এবং আকাশ বিগলিত হল| 9 একটা পরিশ্রান্ত ও প্রাচীন ভূখণ্ডকে পুনরায সতেজ করার জন্য আপনি বৃষ্টি পাঠিয়েছিলেন| 10 আপনার সব পশু সেই ভূখণ্ডে ফিরে এলো| হে ঈশ্বর, সেই জায়গায় দরিদ্র লোকদের আপনি বহু ভাল জিনিস দিয়েছেন| 11 ঈশ্বর আজ্ঞা দিলেন এবং বহু লোক সুসমাচার দিতে গেল: 12 “শক্তিশালী রাজার সৈনিকরা পালিয়ে গেছে! সৈনিকরা য়ুদ্ধ ফেরত্ য়ে সব জিনিস আনবে, বাড়ীর মহিলারা সেগুলো ভাগ করে নেবে| যারা বাড়ীতে আছে তারা সেই সব সম্পদ ভাগ করে নেবে| 13 রূপোয মোড়া ঘুঘুর ডানা ওরা পাবে| সোনায ঝক্ঝক্ করা ডানা তারা পাবে|” 14 সল্মোন পর্বতে ঈশ্বর শত্রু রাজাদের ছত্রভঙ্গ করলেন| ওরা হয়েছিল তুষারে ঝরে যাওয়ার মত| 15 বাশন পর্বত অনেকগুলো শৃঙ্গ সম্বলিত এক বিরাট পর্বত| 16 হে বাশন পর্বত, কেন তুমি সিয়োন পর্বতকে নীচু নজরে দেখ? ঈশ্বর সিয়োন পর্বতকে ভালোবাসেন| প্রভু চিরদিন সেখানে থাকবেন বলে স্থির করেছেন| 17 ঈশ্বর পবিত্র সিয়োন পর্বতে আসেন| তাঁর পিছু পিছু লক্ষ লক্ষ রথ আসে| 18 লোকদের কাছ থেকে উপহার নেওয়ার জন্য, এমনকি যারা তাঁর বিরুদ্ধে গিয়েছিল তাদের কাছ থেকেও উপহার গ্রহণ করার জন্য তিনি জাঁকজমক করে বন্দীদের নেতৃত্ব দিয়ে উচ্চ পর্বতের ওপরে গেলেন| প্রভু ঈশ্বর সেখানে থাকার জন্য গেলেন| 19 প্রভুর প্রশংসা কর! দিনের পর দিন তিনি আমাদের ভার বহন করেন| ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করেন! 20 তিনিই আমাদের ঈশ্বর| তিনি সেই ঈশ্বর যিনি আমাদের রক্ষা করেন| প্রভু আমাদের ঈশ্বর, আমাদের মৃত্যু থেকে রক্ষা করেন| 21 ঈশ্বর অবশ্যই দেখাবেন য়ে তিনি তাঁর শত্রুদের পরাজিত করেছেন| যারা তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেবেন| 22 আমার প্রভু বলেছেন, “বাশন থেকে আমি আমার শত্রুদের নিয়ে আসবো, পশ্চিম দেশ থেকে আমি শত্রুদের নিয়ে আসবো| 23 তোমরা তাদের রক্তের ওপর দিয়ে হাঁটতে পারবে| তোমাদের কুকুর ওদের রক্ত চেটে খাবে| 24 ঈশ্বরের শোভাযাত্রার দিকে তাকিযে দেখ| আমার ঈশ্বর, আমার রাজার পবিত্র শোভাযাত্রার দিকে তাকিযে দেখ| 25 প্রথমেই আসছে গায়করা, তাদের পেছনে রয়েছে বীণাযন্ত্র বাদ্যকারীগণ যাদের অনুসরণ করছিল খঞ্জণী বাজনারতা মেযেরা| 26 মহাসমাবেশে ঈশ্বরের প্রশংসা কর! হে ইস্রায়েলের লোকরা, প্রভুর প্রশংসা কর! 27 ছোট বিন্যামীন নামক উপজাতি তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে| সেখানে যিহূদার বড় পরিবারও রয়েছে| সবূলূন এবং নপ্তালির নেতারাও সেখানে রয়েছেন| 28 ঈশ্বর, আপনার ক্ষমতা আমাদের দেখান! য়ে ক্ষমতা আমাদের জন্য অতীতে ব্যবহার করেছেন সেই ক্ষমতা প্রদর্শন করুন| 29 জেরুশালেমে, আপনার প্রাসাদে আপনাকে উপহার দেবার জন্য রাজারা তাঁদের ঐশ্বর্য় নিয়ে আসবেন| 30 আপনি যা চান আপনার দণ্ড ব্যবহার করে, ঐসব “জন্তুদের” দিয়ে আপনি তাই করান| ঐসব জাতির “ষাঁড়” ও “গোরুদের” আপনার অনুগত করুন| ওই সব জাতিকে আপনি যুদ্ধে পরাজিত করেছেন| ওদের দিয়ে আপনার কাছে রূপো আনয়ন করুন| 31 ওদের দিয়ে মিশর থেকে ধন-সম্পদ আনয়ন করুন| ঈশ্বর, কূশীয়রা য়েন ওদের সম্পদ আপনার কাছে নিয়ে আসে| 32 পৃথিবীতে রাজারা যারা আছো, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রশংসা কর! আমাদের প্রভুর উদ্দেশ্যে প্রশংসা গান কর! 33 ঈশ্বরের গীত গাও! তিনি তাঁর রথ প্রাচীন স্বর্গগুলির মধ্য দিয়ে চালান| তাঁর পরাক্রান্ত রব শোন! 34 তোমাদের য়ে কোন দেবতার থেকে ঈশ্বর অনেক বেশী শক্তিশালী| ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাঁর লোকদের শক্তিশালী করেছেন| 35 তাঁর মন্দিরে ঈশ্বর অবিস্মরণীয| ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাঁর লোকদের শক্তি এবং ক্ষমতা দিয়েছেন| ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
1 হে ঈশ্বর আমার সংকটসমূহ থেকে আমায় রক্ষা করুন! আমার মুখ পর্য়ন্ত জল পৌঁছে গেছে| 2 এখানে এমন কিছু নেই, যার ওপর আমি দাঁড়াতে পারি| আমি কাদায ডুবে য়েতে বসেছি, আমি গভীর জলে ডুবে রয়েছি, আমার চারদিকে ঢেউ উত্তাল হয়ে উঠেছে| আমি প্রায় ডুবে মরতে বসেছি| 3 আমি এতই দুর্বল হয়ে পড়েছি য়ে সাহায্য চাইতেও অক্ষম হয়ে গেছি| আমার গলা যন্ত্রণা করছে| আমার চোখ যন্ত্রণায় টন্ টন্ করে ওঠার আগে পর্য়ন্ত আমি আপনার সাহায্যের প্রতীক্ষা করেছি| 4 আমার মাথায় য়ত চুল আছে, আমার শত্রুর সংখ্য়া তার থেকেও বেশী| কোন কারণ ছাড়াই তারা আমায় ঘৃণা করে| আমাকে বিনাশ করার জন্য ওরা খুব কঠিন চেষ্টা করে| শত্রুরা আমার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে| ওরা বলছে য়ে আমি নাকি চুরি করেছি| এরপর য়ে জিনিস আমি চুরি করি নি, ওরা আমায় তার দাম দিতে বাধ্য করেছে| 5 হে ঈশ্বর, আপনি আমার ত্রুটিগুলি জানেন| আপনার কাছে আমি আমার পাপ লুকোতে পারি না| 6 হে আমার সদাপ্রভু, সর্বশক্তিমান প্রভু, আমার জন্য য়েন আপনার অনুগামীরা লজ্জায না পড়ে| হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আপনার অনুগামীরা য়েন আমার জন্য বিব্রত বোধ না করে| 7 আমার মুখ লজ্জায ঢেকে গেছে| এই লজ্জা আমি আপনার জন্য বহন করছি| 8 আমার ভাযেরা অচেনা মানুষের সঙ্গে য়েরকম ব্যবহার করে সেরকম আমার সঙ্গে করে| আমার মাযের সন্তানরা আমার সঙ্গে ভিন্দেশীর মতই ব্যবহার করে| 9 আপনার মন্দির সম্পর্কে আমার তীব্র অনুভূতিই আমাকে শেষ করে দিচ্ছে| যারা আপনাকে নিয়ে মজা করে তাদের কাছ থেকে আমি অপমান কুড়িযেছি| 10 আমি কাঁদি এবং উপবাস করি, এর জন্য ওরা আমায় নিয়ে হাসাহাসি করে| 11 দুঃখ প্রকাশের জন্য আমি প্রায়শ্চিত্ত করি, কাপড় পরি, লোকে আমায় নিয়ে মজা করে| 12 প্রকাশ্য স্থানে ওরা আমায় নিয়ে আলোচনা করে| ওই মাতালরা আমায় নিয়ে গান বাঁধে| 13 হে ঈশ্বর, আমার দিক থেকে আপনার কাছে এই প্রার্থনা: আমি চাই আপনি আমায় গ্রহণ করুন! হে ঈশ্বর আমি চাই প্রেমের সঙ্গে আপনি আমায় সাড়া দিন| আমি জানি আপনি আমায় উদ্ধার করবেন| এ ব্যাপারে আমি আপনার ওপর নির্ভর করতে পারি| 14 আমাকে কাদা থেকে টেনে তুলুন| আমায় কাদায ডুবে য়েতে দেবেন না| যারা আমায় ঘৃণা করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| এই গভীর জল থেকে আমায় উদ্ধার করুন| 15 ঢেউগুলো য়েন আমায় ডুবিয়ে না দেয়| গভীর গহ্বরকে আমায় ভক্ষণ করতে দেবেন না| কবরকে আমায় গিলে ফেলতে দেবেন না| 16 প্রভু, আপনার প্রেম ভালো| আপনার ভালোবাসা দিয়ে আমায় উত্তর দিন| আপনার সব দয়া নিয়ে আমার দিকে ফিরুন, আমায় সাহায্য করুন! 17 আপনার দাসের কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন না| আমি সংকটের মধ্যে পড়েছি! তাড়াতাড়ি আমায় সাহায্য করুন! 18 আসুন আমার আত্মাকে রক্ষা করুন| শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| 19 আমার লজ্জা আপনি জানেন| আপনি জানেন য়ে আমার শত্রুরা আমাকে ঘৃণা ও অপমান করেছে| ওরা আমার প্রতি য়ে কাজ করেছে তাও আপনি দেখেছেন| 20 সেই লজ্জা আমায় বিদীর্ণ করে দিয়েছে| লজ্জায আমি মরে য়েতে বসেছি! আমি সহানুভূতি পাওয়ার আশা করেছিলাম কিন্তু কখনই আমি তা পাই নি| আমি অপেক্ষা করেছিলাম কোন লোক এসে আমায় সান্ত্বনা দিক কিন্তু কোন লোক আসে নি| 21 ওরা আমায়, আহার নয়, বিষ দিয়েছে| যখন আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম দ্রাক্ষারসের বদলে ওরা আমায় অম্লরস দিয়েছিল| 22 ওদের টেবিলগুলো খাবারে পরিপূর্ণ| সমারোহপূর্ণ মঙ্গল আহার ওদের আছে| ওদের ভোজ য়েন ওদের বিনাশ করে| 23 আমি কামনা করি ওরা য়েন অন্ধ হয়ে যায় এবং ওদের মেরুদণ্ড য়েন দুর্বল হয়ে পড়ে| 24 ওদের আপনার সব ক্রোধ অনুভব করতে দিন| 25 ওদের ঘর শূন্য করে দিন| একটা কেউ য়েন ওখানে বেঁচে না থাকে| 26 ওদের শাস্তি দিন, ওরা ছুটে পালাবে| তখন ওরা আলোচনা করার জন্য কিছু যন্ত্রণা ও ক্ষত পাবে| 27 মন্দ কাজের জন্য ওদের শাস্তি দিন| আপনার ধার্ম্মিকতা ওদের দেখাবেন না| 28 জীবনের গ্রন্থ থেকে ওদের নাম মুছে দিন| জীবনের পুস্তকে ধার্ম্মিক লোকদের নামের সঙ্গে ওদের নাম লিখবেন না! 29 আমি দুঃখী এবং যন্ত্রণাবিদ্ধ| ঈশ্বর আমায় টেনে তুলুন; আমায় রক্ষা করুন! 30 গানের মধ্যে দিয়ে আমি ঈশ্বরের প্রশংসা করবো| ধন্যবাদ গীতের মধ্য দিয়ে আমি তাঁর প্রশংসা করবো| 31 এটাই ঈশ্বরকে সুখী করবে! উত্সর্গ হিসেবে একটা গোটা পশু দেওয়ার চেয়ে অথবা একটা ষাঁড় হত্যা করার চেয়ে, গানের মধ্যে দিয়ে ধন্যবাদ দেওয়া অনেক ভাল হবে| 32 হে বিনযী লোকরা, ঈশ্বরের উপাসনার জন্য এসো| এই সব জেনে তোমরা খুশী হবে| 33 দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কথা প্রভু শোনেন| যারা বন্দী আছেন প্রভু তাদের এখনও পছন্দ করেন| 34 হে আকাশ ও পৃথিবী, ঈশ্বরের প্রশংসা কর! হে সমুদ্র এবং সমুদ্রের মধ্যের সবকিছু, প্রভুর প্রশংসা কর! 35 প্রভু সিয়োনকে রক্ষা করবেন| প্রভু যিহূদার শহরগুলি আবার নির্মাণ করবেন| সেই ভূখণ্ড যাদের, সেখানে তারা আবার বাস করবে! 36 তাঁর দাসদের উত্তরপুরুষরা এই ভূখণ্ড পাবে| সেই সব লোক যারা তাঁর নামকে ভালোবাসে তারা সেই ভূখণ্ডে বসবাস করবে|
1 ঈশ্বর আমায় রক্ষা করুন! ঈশ্বর শীঘ্র আমায় সাহায্য করুন! 2 লোকে আমায় হত্যা করার চেষ্টা করছে| ওদের নিরাশ করুন! ওদের লজ্জিত বোধ করান! য়ে সব লোক আমার খারাপ করতে চায় তাদের য়েন পতন হয় ও তারা য়েন লজ্জা পায়| 3 লোকে আমায় নিয়ে হাসাহাসি করে| আশা করি ওদের যা প্রাপ্য ওরা তাই পাবে এবং লজ্জাবোধ করবে| 4 আমি কামনা করি যারা আপনার উপাসনা করে তারা য়েন সত্যিকারের সুখী হয়| যারা আপনার সাহায্য চায় তারা য়েন সর্বদাই আপনার প্রশংসা করে| 5 ঈশ্বর আমি দীন অসহায় মানুষ| ঈশ্বর তাড়াতাড়ি করুন! আপনি আসুন, আমায় রক্ষা করুন! ঈশ্বর একমাত্র আপনিই আমায় উদ্ধার করতে পারেন| আর দেরী করবেন না!
1 হে প্রভু, আমি আপনাতে বিশ্বাস রাখি, তাই আমি কখনও হতাশ হব না| 2 আপনার ধার্ম্মিকতা দিয়ে আপনি আমায় রক্ষা করবেন| আপনিই আমায় উদ্ধার করবেন| আমার কথা শুনুন, আমায় রক্ষা করুন| 3 আপনি আমার দুর্গ হোন, সেই গৃহ হোন যেখানে আমি নিরাপত্তার জন্য ছুটে য়েতে পারি| আপনিই আমার শিলা এবং আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| তাই আমাকে রক্ষার আজ্ঞা দিন| 4 হে আমার ঈশ্বর, আমায় দুষ্ট লোকের হাত থেকে রক্ষা করুন| নৃশংস ও মন্দ লোকেদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| 5 আমার জন্মের সময় থেকে আমি আপনার যত্নে ছিলাম| আমার জন্মের সময় থেকে আপনি আমার সঙ্গে ছিলেন| 6 এমনকি আমার জন্মের আগে থেকেই আমি আপনার ওপর নির্ভর করেছি| আমি যখন মাতৃগর্ভে ছিলাম তখনও আমি আপনার ওপর আস্থা রেখেছি| সর্বদাই আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি| 7 আপনিই আমার শক্তির উত্স| তাই অন্য লোকদের কাছে আমি দৃষ্টান্তস্বরূপ ছিলাম| 8 য়ে সব বিস্ময়কর জিনিস আপনি করেন তার সম্বন্ধে সর্বদাই আমি গান গাই| 9 আমি বৃদ্ধ হয়েছি বলে আমায় ছুঁড়ে ফেলে দেবেন না| হত শক্তি হয়েছি বলে আমায় ত্যাগ করবেন না| 10 শত্রুরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে| ওরা একসঙ্গে মিলিত হয়েছিলো, এবং আমাকে হত্যা করার চক্রান্ত করেছিলো| 11 আমার শত্রুরা বলছে, “যাও ওকে তুলে নিয়ে এসো! ঈশ্বর ওকে ত্যাগ করেছেন| আর কেউ ওকে সাহায্য করবে না|” 12 ঈশ্বর, আমায় পরিত্যাগ করবেন না! ঈশ্বর তাড়াতাড়ি এসে আমায় রক্ষা করুন! 13 আমার শত্রুদের পরাজিত করুন! ওদের সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস করে দিন! যারা আমার ক্ষতি করতে চাইছে, তারা য়েন লজ্জিত ও অপমানিত হয়| 14 তাহলে আমি সব সময়ই আপনার ওপর নির্ভর করবো এবং আমি আরো বেশী করে আপনার প্রশংসা করবো| 15 আপনি য়ে কত ভালো, তা আমি লোকদের বলবো| আমি লোকদের বলবো কিভাবে আপনি আমায় প্রতিবার রক্ষা করেছিলেন| তা এত বার ঘটেছে য়ে গুনে শেষ করা যায় না| 16 আমি আপনার মহত্বের কথা বলবো, প্রভু আমার সদাপ্রভু| আমি সেই সব ধার্ম্মিকতার কথা বলব, যা শুধুমাত্র আপনি করতে পারেন| 17 ঈশ্বর, আমি যখন একটি ছোট্ট বালক ছিলাম তখন থেকে আপনি আমায় শিক্ষা দিয়েছেন| তখন থেকে আজ পর্য়ন্ত আপনি য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেছেন তা আমি মানুষকে বলেছি! 18 এখন আমি বৃদ্ধ হয়েছি, আমার চুল পেকে গেছে| কিন্তু হে ঈশ্বর, আমি জানি, আপনি আমায় ত্যাগ করবেন না| প্রত্যেকটি নতুন প্রজন্মকে আমি আপনার ক্ষমতা ও মহত্বের কথা বলবো| 19 ঈশ্বর, আপনার ধার্ম্মিকতা আকাশের সীমা অতিক্রম করে যায়| ঈশ্বর, কোন দেবতাই আপনার মত নয়| আপনি বিস্ময়কর সব কাজ করেছেন| 20 আপনি আমাকে সমস্যা এবং দুঃসময় প্রত্যক্ষ করিয়েছেন| কিন্তু তাদের সবকিছু থেকে রক্ষা করে আপনি আমায় বাঁচিয়ে রেখেছেন| কত গভীরে আমি ডুবে গিয়েছিলাম সেটা কথা নয়, কিন্তু আপনি আমায় সমস্যা থেকে টেনে তুলেছেন| 21 অতীতে যা করেছি তার থেকেও মহত্ কাজসমূহ করতে আমায় সাহায্য করুন| আমাকে আরাম দিতে থাকুন| 22 আমি বীণা বাজিয়ে আপনার প্রশংসা করবো| হে ঈশ্বর আমি গাইবো ও বলবো য়ে, আপনার ওপর নির্ভর করা য়েতে পারে| ইস্রায়েলের পবিত্র একের জন্য বীণা বাজিয়ে আমি গান গাইবো| 23 আপনি আমার আত্মাকে রক্ষা করেছেন| আমার আত্মা সুখী হবে| নিজের মুখে আমি আপনার প্রশংসা গান করবো| 24 আমার জিভ সর্বদাই আপনার ধর্মশীলতার গান গাইবে এবং যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো তারা পরাজিত ও অসম্মানিত হবে|
1 ঈশ্বর রাজাকে আপনার মত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করুন| রাজার পুত্রকে আপনার ধার্মিকতা সম্পর্কে শিক্ষালাভ করতে সাহায্য করুন| 2 রাজাকে আপনার লোকদের প্রতি ন্যায্য বিচার করতে সাহায্য করুন| আপনার দীন লোকদের প্রতি বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিতে তাকে সাহায্য করুন| 3 সারা ভূখণ্ড জুড়ে শান্তি ও ন্যায়বিচার থাকতে দিন| 4 রাজাকে দীন মানুষের প্রতি সুবিচার করতে দিন| সহায় সম্বলহীনকে তিনি য়েন সাহায্য করেন| ওদের যারা আঘাত করে তাদের য়েন উনি শাস্তি দেন| 5 য়তদিন পর্য়ন্ত আকাশে চাঁদ থাকে এবং সূর্য় প্রতিভাত হবে ততদিন য়েন লোকেরা রাজাকে ভয় ও শ্রদ্ধা করে| লোকরা য়েন তাকে চিরদিন ভয় ও শ্রদ্ধা করে| 6 য়ে বৃষ্টি শস্য়ক্ষেতের ওপর ঝরে পড়ে, রাজাকে সেই বৃষ্টির মত হতে সাহায্য করুন| য়ে জলধারা জমিতে পতিত হয়, তাকে সেই ধারার মত হতে সাহায্য করুন| 7 য়তক্ষণ তিনি রাজা রয়েছেন ততদিন য়েন সত্ লোকরা বিকশিত হয়| য়তদিন আকাশে চাঁদ রয়েছে ততদিন য়েন শান্তি বজায় থাকে| 8 এক সমুদ্র থেকে আর এক সমুদ্র পর্য়ন্ত তার রাজত্বের বিস্তার হোক| ফরাত্ নদী থেকে পৃথিবীর দূর প্রান্ত পর্য়ন্ত য়েন তাঁর রাজত্ব বজায় থাকে| 9 মরুভূমিতে যারা বাস করে তারা সবাই য়েন তাঁর কাছে আনত হয়| তাঁর সব শত্রুরা য়েন মাটির ধূলোতে মুখ ঠেকিযে তার কাছে অবনত হয়| 10 তর্শীশের রাজা এবং অন্যান্য দূরবর্তী রাজ্য য়েন তাঁর জন্য উপহার বয়ে আনে| শিবা ও সবার রাজারা য়েন তার জন্য নৈবেদ্য বয়ে আনে| 11 সব রাজা য়েন আমাদের রাজার কাছে নত হয়| সব জাতি য়েন তাঁর সেবা করেন| 12 আমাদের রাজা সহায় সম্বলহীনদের সাহায্য করেন| আমাদের রাজা দরিদ্র অসহায় মানুষকে সাহায্য করেন| 13 দরিদ্র ও অসহায় মানুষ তাঁর ওপর নির্ভর করেন| রাজা তাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করেন| 14 সেই সব নিষ্ঠুর লোকরা যারা ওদের ক্ষতি করতে চেষ্টা করে, তাদের হাত থেকে রাজা ওদের রক্ষা করেন| ওই সব দীন-দরিদ্র মানুষের জীবন রাজার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান| 15 রাজা দীর্ঘজীবী হোন! তিনি য়েন শিবার কাছ থেকে সোনা গ্রহণ করেন| সর্বদা রাজার জন্য প্রার্থনা কর| প্রতিদিন তাকে আশীর্বাদ কর| 16 জমিগুলিতে য়েন প্রচুর পরিমানে ফসল হয়| পাহাড়গুলো য়েন শস্য়ে ভরে ওঠে| জমিগুলো য়েন লিবানোনের মত উর্বর হয়ে ওঠে| য়েমন করে মাঠগুলো ঘাসে ভরে যায় তেমন করে য়েন শহরগুলো মানুষে ভরে ওঠে| 17 রাজা য়েন চিরদিনের জন্য বিখ্য়াত হয়ে যান| য়তদিন সূর্য় প্রতিভাত হবে, ততদিন য়েন লোকরা তাঁর নাম মনে রাখে| লোকরা য়েন তাঁর আশীর্বাদ পায় এবং সকলে য়েন তাঁকে আশীর্বাদ করে| 18 প্রভু ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা কর! একমাত্র ঈশ্বরই এমন আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করতে পারেন| 19 চিরদিন তাঁর মহিমাময় নামের প্রশংসা কর! তাঁর মহিমা য়েন সারা পৃথিবীকে পরিপূর্ণ করে দেয়! আমেন! আমেন! 20 য়িশযের পুত্র, দায়ূদের প্রার্থনাসমূহ এখানেই শেষ হলো|
1 ঈশ্বর সত্যিই ইস্রায়েলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন| যাদের হৃদয় শুচি তাদের সঙ্গে ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন| 2 আমার প্রায় পদস্খলন হয়েছিলো এবং আমি পাপ কাজ করতে শুরু করেছিলাম| 3 আমি দেখেছি ঐসব দুষ্ট লোকরা কৃতকার্য় হয়েছে এবং তা দেখে ঐসব উদ্ধত লোকদের প্রতি আমি ঈর্ষা করেছিলাম| 4 ওরা সবাই বলবান লোক ছিলো| বেঁচে থাকবার জন্য ওদের কোন লড়াই করতে হত না| 5 ঐসব উদ্ধত লোককে আমাদের মত দুর্ভোগ পোহাতে হয় না| অন্যান্য লোকেদের মত ওদের কোন সংকট নেই| 6 তাই ওরা উদ্ধত এবং মানুষকে ঘৃণা করে| এই অহঙ্কারকে তারা গলার মালার মত এবং শৌখিন বস্ত্রের মত সহজেই ধারণ করে| 7 ঐসব লোক যদি ওদের পছন্দের কিছু দেখে, ওরা গিয়ে তা নিয়ে চলে আসে| ওরা যা মনে করে, ওরা তাই করতে পারে| 8 লোকের সম্পর্কে ওরা নির্মম ও অহিতকর কথাবার্তা বলে| অন্যদের কাছ থেকে ওরা কিভাবে সুবিধে নেয সে সম্বন্ধে ওরা গর্বের সঙ্গে কথা বলে| 9 ঐসব অহঙ্কারী লোকরা নিজেদের দেবতা বলে ভাবে! ওরা ভাবে ওরাই পৃথিবীর শাসনকর্তা| 10 এমনকি ঈশ্বরের লোকরা পর্য়ন্ত সাহায্যের জন্য ওদের কাছে ছুটে যায়| ঐ উদ্ধত লোকরা যা বলে, ওরাও তাই করে| 11 ঐ মন্দ লোকরা বলে, “আমরা কি করছি ঈশ্বর তা জানেন না! ঈশ্বর, যিনি পরাত্পর, তিনি জানেন না!” 12 ঐ অহঙ্কারী লোকরা প্রচণ্ড দুর্জন, কিন্তু ওরা ধনী এবং ওরা ক্রমশঃ আরো ধনী হয়ে উঠছে| 13 তাই আমার আত্মাকে কেন শুদ্ধ হতে হবে? আমি কেন আমার হাত নির্দোষ রাখব? 14 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমি যন্ত্রণা ভোগ করি| প্রত্যেকদিন সকালে আপনি আমায় শাস্তি দেন| 15 ঈশ্বর, এই সব বিষযে আমি অন্য লোকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি| কিন্তু আমি জানি তাতে আপনার লোকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে| 16 এই সব বিষয় জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি| কিন্তু এটা আমার পক্ষে ভীষণ কষ্টকর| 17 য়তক্ষণ পর্য়ন্ত আমি আপনার মন্দিরে যাই নি, আমি ঈশ্বরের মন্দিরে গেলাম এবং তারপর বুঝতে পারলাম| 18 ঈশ্বর, সত্যিই ঐসব লোককে আপনি ভযানক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছেন| ওদের পতন এবং বিনাশ এখন সহজ হবে| 19 হঠাত্ই সমস্যা আসতে পারে এবং ঐ অহঙ্কারী লোকরা ধ্বংস হবে| ওদের সাংঘাতিক কিছু ঘটতে পারে এবং ওরা শেষ হয়ে যাবে| 20 প্রভু য়েমন করে আমরা জেগে উঠে স্বপ্নকে ভুলে যাই, ঐসব লোকরা সেই স্বপ্নের মতই বিস্মৃত হবে| আমাদের রাতের দুঃস্বপ্ন য়েমন আপনি অদৃশ্য করে দেন, তেমনি করে আপনি ওই লোকগুলোকে অদৃশ্য করে দেবেন| 21 আমি অত্যন্ত নির্বোধ ছিলাম| আমি দুষ্ট ও ধনী লোকদের কথা ভাবতাম এবং ক্লেশগ্রস্ত হয়ে পড়তাম| হে ঈশ্বর, আমি ক্লেশগ্রস্ত ছিলাম এবং আপনার ওপর রাগ করেছিলাম! আমি নির্বোধ ও অজ্ঞ পশুর মত ব্যবহার করেছিলাম| 22 23 আমার যা কিছু দরকার তা আমার আছে! আমি সর্বদাই আপনার সঙ্গে আছি| হে ঈশ্বর আপনি আমার হাত ধরুন| 24 ঈশ্বর, আমায় সুপরামর্শ দিন ও পরিচালিত করুন| তাহলে আপনি আমায় গৌরবের পথে নিয়ে যাবেন| 25 হে স্বর্গের ঈশ্বর, আমি সর্বদা আপনার সঙ্গে রয়েছি এবং আমি যখন আপনার সঙ্গে রয়েছি তখন এই পৃথিবীতে আমি আর কী চাইতে পারি? 26 আমার এই দেহ মন একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে, কিন্তু আমার শিলা, য়াঁকে আমি ভালোবাসি তিনি থাকবেন| চিরকালের জন্য আমার কাছে ঈশ্বর আছেন! 27 ঈশ্বর যারা আপনাকে ত্যাগ করেছে তারা হারিযে যাবে| যারা আপনার প্রতি অবিশ্বস্ত তাদের আপনি ধ্বংস করে দেবেন| 28 আমি জানি, আমি ঈশ্বরের কাছে এসেছি এবং তাঁর কাছাকাছি থাকা আমার পক্ষে ভালো| আমি আমার প্রভু সদাপ্রভুকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে নিয়েছি| ঈশ্বর আপনি যা কিছু করেছেন তাঁর সব কিছু বলতে আমি এসেছি|
1 ঈশ্বর আপনি কি চিরকালের জন্য আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন? আপনি কি এখনও আপনার লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ আছেন? 2 অতীতে আপনি য়ে সব লোকদের এনেছিলেন তাদের কথা স্মরণ করুন| আপনি আমাদের রক্ষা করেছেন| তাই আমরা সবাই আপনার| সিয়োন পর্বতের কথা স্মরণ করুন, যেখানে আপনি বাস করতেন| 3 ঈশ্বর, সেই সব প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের ওপর দিয়ে আপনি হেঁটে আসুন| য়ে পবিত্র স্থানকে শত্রুরা ধ্বংস করে দিয়েছে সেখানে ফিরে আসুন| 4 মন্দিরেই তারা যুদ্ধের উন্মত্ত গর্জন শুরু করেছিলো| যুদ্ধে তারা জয়ী হয়েছে এটা বোঝানোর জন্য ওরা মন্দিরে পতাকা উড়িযেছিল| 5 যারা নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে শত্রু সৈন্যরা সেই সব লোকের মত নির্মম| 6 হে ঈশ্বর, কুঠার ও কুড়ুল ব্যবহার করে ওরা আপনার মন্দিরের খোদাই করা কাঠের কক্ষগুলি ভেঙ্গে চুরমার করেছে| 7 ঐ সৈন্যরা আপনার পবিত্রস্থান পুড়িয়ে দিয়েছে| আপনার নামের সম্মানে সেই মন্দির তৈরী হয়েছিলো কিন্তু ওরা তা মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে| 8 শত্রুরা আমাদের সম্পূর্ণভাবে গুঁড়িযে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে| দেশের প্রত্যেকটা পবিত্রস্থান ওরা পুড়িয়ে দিয়েছে| 9 আমরা আমাদের কোন চিহ্নসমূহ দেখতে পাচ্ছি না| আর কোন ভাববাদী নেই| কেউই জানে না এখন কি করতে হবে| 10 ঈশ্বর আর কতদিন শত্রুরা আমাদের নিয়ে উপহাস করবে? আপনি কি চিরদিন ওদের আপনার নামের অবমাননা করতে দেবেন? 11 ঈশ্বর, কেন আপনি আমাদের এত কঠিন শাস্তি দিলেন? আপনার বিপুল শক্তি ব্যবহার করে আপনি আমাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিলেন! 12 ঈশ্বর দীর্ঘদিন ধরে আপনি আমাদের রাজা ছিলেন| এই দেশে য়ে কোন য়ুদ্ধ জয় করতে আপনি আমাদের সাহায্য করেছেন| 13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগে ভাগ করতে আপনি আপনার পরাক্রম প্রযোগ করেছিলেন| 14 বড় বড় সমুদ্র দানবদের আপনি পরাজিত করেছেন! আপনিই লিবিয়াথনের মাথা গুঁড়িযে দিয়েছেন এবং তার দেহ পশুদের খাওয়ার জন্য ফেলে এসেছেন| 15 নদী এবং ঝর্ণায আপনিই প্রবাহ দিয়েছেন| আপনিই নদীকে শুষ্ক করে দিয়েছেন| 16 হে ঈশ্বর, আপনিই দিন এবং রাত্রি নিয়ন্ত্রণ করেন| আপনিই চাঁদ এবং সূর্য় সৃষ্টি করেছেন| 17 আপনিই পৃথিবীর সব কিছুর সীমা নির্ধারণ করেছেন| আপনিই শীত, গ্রীষ্ম সৃষ্টি করেছেন| 18 প্রভু মনে রাখবেন কেমন করে শত্রুরা আপনাকে অপমান করেছিলো! ঐ লোকগুলো আপনাকে অপমান করেছিল| ঐসব মূর্খ লোক আপনার নামকে ঘৃণা ও নিন্দে করেছে! 19 ঐসব বন্য পশুদের আপনার পারাবত নিয়ে য়েতে দেবেন না! আপনার দীন দরিদ্র মানুষদের চিরদিনের জন্য ভুলে যাবেন না| 20 আমাদের চুক্তির কথা স্মরণ করুন! এই দেশের প্রত্যেকটি অন্ধকার স্থানে রয়েছে হিংসাত্মক ঘটনা| 21 ঈশ্বর, আপনার লোকদের সঙ্গে দুর্য়্ববহার করা হয়েছে| ওদের আর আহত হতে দেবেন না| আপনার দীন দুঃখী লোকরা আপনার প্রশংসা করে| 22 ঈশ্বর, উঠুন এবং য়ুদ্ধ করুন! প্রতিদিন য়ে অবমাননা ঐসব নির্বোধদের কাছ থেকে আপনাকে পেতে হয়েছে তা মনে রাখবেন| 23 আপনার শত্রুদের উন্মত্ত চিত্কারের কথা মনে রাখবেন| বার বার ওরা আপনাকে অপমান করেছে!
1 হে ঈশ্বর, আমরা আপনার প্রশংসা করি! আমরা আপনার প্রশংসা করি| আপনি (আপনার নাম) খুব কাছাকাছি রয়েছেন এবং য়ে সব আশ্চর্য় কার্য়্য় আপনি করেছেন লোকে তার কথা বলে| 2 ঈশ্বর বলেন, “আমি বিচারের সময় নির্দিষ্ট করব এবং আমি ন্যায়সঙ্গতভাবে বিচার করবো| 3 পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব কিছুই কম্পমান এবং পতনোন্মুখ হতে পারে, কিন্তু আমি ওদের দৃঢ় সংবদ্ধ করে রাখবো|” 4 “কিছু লোক প্রচণ্ড গর্বিত| ওরা ভাবে ওরাই শক্তিশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ| কিন্তু আমি ওই লোকদের বলেছি, মিথ্যা বড়াই করো না! এত অহঙ্কারী হযো না!”‘ 5 6 পৃথিবীতে এমন কোন শক্তি নেই যা একটা মানুষকে এতখানি গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পারে| 7 প্রভুই বিচারক| কে গুরুত্বপূর্ণ হবে তা ঈশ্বরই স্থির করেন| ঈশ্বর একজন ব্যক্তিকে তুলে নেন এবং তাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলেন| অন্যদিকে, তিনি অন্য এক ব্যক্তিকে টেনে নামিয়ে দেন এবং তাকে গুরুত্বহীন করেন| 8 মন্দ লোকদের শাস্তি দিতে ঈশ্বর সর্বদাই প্রস্তুত| প্রভুর হাতে একটা পেয়ালা আছে| সেই পেয়ালাটি বিষাক্ত দ্রাক্ষারসে পরিপূর্ণ| এই দ্রাক্ষারস (শাস্তি) তিনি মন্দ লোকদের ওপর ঢালবেন এবং শেষ বিন্দু পর্য়ন্ত তারা তা পান করবে| 9 এসব বিষয় সম্পর্কে আমি সর্বদাই লোকদের বলবো| আমি ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা গান করবো| 10 মন্দ লোকদের শক্তি আমি হরণ করবো এবং ভাল লোকদের আমি বেশী শক্তি দেবো|
1 যিহূদার লোকরা ঈশ্বরকে জানে| ইস্রায়েলের লোকরা ঈশ্বরের নামকে সম্মান করে| 2 শালেমে ঈশ্বরের মন্দির আছে| সিয়োন পর্বতের ওপর ঈশ্বর বাস করেন| 3 সেই খানেই ঈশ্বর, তীর-ধনুক, ঢাল-তলোযার এবং অন্য সব য়ুদ্ধাস্ত্র, চূর্ণবিচূর্ণ করেছেন| 4 হে ঈশ্বর, পর্বতসমূহের থেকে ফিরে, যেখানে আপনি আপনার শত্রুদের পরাজিত করেছেন, আপনাকে মহিমান্বিত দেখাচ্ছে| 5 ঐসব সৈন্য ভেবেছিলো ওরা শক্তিশালী| কিন্তু এখন তারা য়ুদ্ধক্ষেত্রে মরে পড়ে রয়েছে| ওদের গায়ে যা কিছু ছিল সবই খুলে নেওয়া হয়েছিল| ঐ বলশালী সৈনিকরা কেউই নিজেকে রক্ষা করতে পারে নি| 6 যাকোবের ঈশ্বর ওই সৈন্যদের উদ্দেশ্যে গর্জন করে উঠলেন| তারা তাদের ঘোড়াগুলো সহ পড়ে মরে গেল| 7 ঈশ্বর, আপনি ভযানক! যখন আপনি ক্রুদ্ধ হন তখন কেউ আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে না| 8 বিচারক হিসাবে প্রভুই তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন| এই ভূখণ্ডের নম্র ও ভক্ত লোকদের ঈশ্বর রক্ষা করেছেন| স্বর্গ থেকেই তিনি এই সিদ্ধান্ত পাঠিয়েছেন| সারা পৃথিবী ভয়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল| 9 10 ঈশ্বর, যখন আপনি মন্দ লোকেদের শাস্তি দেন তখন লোকে আপনাকে সম্মান করে| আপনি আপনার ক্রোধ প্রদর্শন করলেন এবং যারা বেঁচে গিয়েছিলো তারা শক্তিশালী হল| 11 লোকরা তোমরা ঈশ্বরের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে| এখন, যা প্রতিশ্রুতি করেছিলে, তা তাঁকে দাও| পৃথিবীর প্রত্যেকটি জায়গার মানুষ ঈশ্বরকে ভয় ও শ্রদ্ধা করে| তারা তাঁর কাছে উপহার নিয়ে আসবে| 12 ঈশ্বর বড় বড় নেতাদের পরাজিত করেন| পৃথিবীর প্রত্যেকটি রাজা তাঁকে ভয় করে|
1 আমি ঈশ্বরের কাছে কেঁদে পড়েছিলাম এবং সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছি| হে ঈশ্বর, আমি উচ্চস্বরে আপনাকে ডেকেছি, আমার কথা শুনুন! 2 আমার প্রভু, যখনই আমি সমস্যায় পড়ি তখনই আমি আপনার কাছে আসি| সারা রাত আমি আপনার দিকে আমার দুবাহু বাড়িযে দিয়েছিলাম| আমার আত্মা আরাম পেতে অস্বীকার করেছিল| 3 আমি ঈশ্বর বিষযে চিন্তা করেছি এবং আমি যা অনুভব করেছি তা বলতে চেয়েছি| কিন্তু আমি পারি নি| 4 আপনি আমাকে ঘুমাতে দেন নি| আমি কিছু বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি এত বিচলিত ছিলাম য়ে কথা বলতে পারছিলাম না| 5 আমি অতীতের কথা চিন্তা করছিলাম| বহু অতীতে যা ঘটে গেছে আমি সেই সব চিন্তা করেছিলাম| 6 রাত্রে আমি আমার গানগুলো সম্পর্কে ভাবি| আমি নিজের সঙ্গে কথা বলি এবং বুঝতে চেষ্টা করি| 7 আমি বিস্মিত হই, “আমাদের প্রভু কি চিরদিনের মত আমাদের ত্যাগ করে চলে গেলেন? আবার কি তিনি আমাদের চাইবেন? 8 ঈশ্বরের প্রেম কি চিরদিনের জন্য চলে গেল? আবার কি তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন? 9 ঈশ্বর কি কৃপা দেখাতে ভুলে গেলেন? তাঁর সহানুভূতি কি ক্রোধে রূপান্তরিত হয়েছে?” 10 তারপর আমি ভাবলাম, “য়ে বিষয়টা আমায় সব থেকে বেশী বিব্রত করলো তা হল: পরাত্পর কি তাঁর ক্ষমতা হারিযেছেন?” 11 প্রভু কি করেছেন তা আমার স্মরণে আছে| হে ঈশ্বর, অতীতে য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় আপনি করেছিলেন, তা আমার স্মরণে আছে| 12 আপনি যা করেছেন, তা নিয়ে আমি ভেবেছি, সে সম্পর্কে আমি চিন্তা করেছি| 13 ঈশ্বর, আপনার পথই পবিত্র পথ| ঈশ্বর কেউই আপনার মত মহত্ নয়| 14 আপনিই সেই ঈশ্বর, যিনি আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেছেন| আপনি লোকদের আপনার পরাক্রমের পরিচয় দিয়েছেন| 15 আপনার ক্ষমতাবলে আপনি আপনার লোকদের রক্ষা করেছেন| যাকোব এবং য়োষেফের উত্তরপুরুষদের আপনি রক্ষা করেছেন| 16 ঈশ্বর, আপনাকে দেখে জলও ভীত হয়েছিলো| গভীর জলরাশি আপনাকে দেখে ভয়ে কেঁপে গিয়েছিলো| 17 ঘন মেঘে জল সিঞ্চন করেছিলো| লোকে উঁচু মেঘে দারুণ বজ্র নির্ঘোষ শুনেছিলো| তারপর আপনার বিদ্য়ুতের তীর সারা মেঘে ঝলক দিয়ে উঠেছিলো| 18 গুরু গুরু গর্জনের বজ্রধ্বনিতে আকাশ ভরে উঠেছিলো| বিদ্য়ুত্ ঝলকে সারা পৃথিবী আলোকিত হয়ে উঠেছিলো| পৃথিবী শিহরিত ও কম্পিত হয়েছিলো| 19 ঈশ্বর, গভীর জলের মধ্যে দিয়ে আপনি হেঁটে গেলেন, গভীর সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে হেঁটে গেলেন| কিন্তু সেখানে আপনি কোন চরণচিহ্ন রেখে যান নি| 20 মোশি এবং হারোণের মধ্যে দিয়ে আপনি আপনার লোকদের মেষের মত পরিচালিত করেছেন|
1 হে আমার লোকরা, আমার শিক্ষামালা শোন| আমি যা বলছি তা শোন| 2 আমি তোমাদের এই গল্প বলবো| আমি তোমাদের এই প্রাচীন গল্পটি বলবো| 3 এই গল্প আমরাও শুনেছি| এই গল্পটা আমরা খুব ভালোভাবে জানি| আমাদের পিতা-পিতামহরা এই গল্প বলেছেন| 4 এই গল্প আমরাও ভুলে যাবো না| আমাদের লোকরা শেষ প্রজন্মকে পর্য়ন্ত এই গল্প বলতে থাকবে| আমরা সবাই প্রভুর প্রশংসা করবে এবং প্রভু য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেছেন তা বলবো| 5 প্রভু যাকোবের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছেন| ইস্রায়েলকে ঈশ্বর একটা বিধি দিয়েছিলেন| আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছেন| তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছেন তারা য়েন তাদের উত্তরপুরুষদের সেই বিধি সম্পর্কে শিক্ষাদান করে| 6 নতুন শিশুরা জন্ম নেবে| তারা আস্তে আস্তে বড় হবে| তারা তাদের ছেলেমেযেদের এই গল্পগুলো বলবে| এই ভাবে শেষ প্রজন্মের মানুষ পর্য়ন্ত এই বিধি জানতে পারবে| 7 তাই ঐসব লোকরাই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবে| ঈশ্বর কি করেছেন তা তারা ভুলবে না| ওরা খুব যত্ন করে তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করবে| 8 যদি লোকরা তাদের শিশুদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো সম্পর্কে শিক্ষা দেয় তাহলে ওই শিশুরা ওদের পূর্বপুরুষদের মত হবে না| ওদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়েছিলো| তারা তাঁকে মানতে অস্বীকার করেছিলো| ঐসব লোক প্রচণ্ড একগুঁযে ছিলো| ওরা ঈশ্বরের আত্মার প্রতি নিষ্ঠাবান ছিল না| 9 ইফ্রযিমের লোকেরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ছিল কিন্তু তারা য়ুদ্ধক্ষেত্র থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল| 10 তারা ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের চুক্তি রক্ষা করে নি| তারা তাঁর শিক্ষামালা মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো| 11 ঈশ্বর য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেছিলেন, ইফ্রযিমের লোকরা তা ভুলে গিয়েছিলো| তিনি য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় ওদের দেখিয়েছিলেন, তা তারা ভুলে গিয়েছিলো| 12 ঈশ্বর ওদের পিতৃপুরুষদের মিশরের সোযনে, তাঁর পরাক্রম প্রদর্শন করে দেখিয়েছিলেন| 13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগ করেছিলেন এবং লোকদের সাগর পার করিয়েছিলেন| সেই জল দুধারে একটি শক্তি দেওয়ালের মত দাঁড়িয়েছিলো| 14 প্রতিদিন প্রলম্বিত মেঘের দ্বারা ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়েছিলেন| প্রতিটি রাত্রে আগুনের আলো দিয়ে ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়ে ছিলেন| 15 ঈশ্বর মরুভূমির পাথরকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন| মাটির গভীর অতল থেকে ওই সব লোকদের তিনি জলও দিয়েছেন| 16 পাথর থেকে আগত ঝর্ণার জলকে ঈশ্বরই নদীর প্রবাহ দিয়েছেন! 17 কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ অব্যাহত রেখেছিল| পরাত্পরের বিরুদ্ধে তারা মরুভূমিতে পর্য়ন্ত বিদ্রোহ করেছে| 18 তারা যখন তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করবার জন্য খাবার চাইল তখন তারা তাদের মনে মনে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করল| 19 ওরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিয়োগ করে বলেছিলো, “ঈশ্বর কি আমাদের এই মরুভূমিতে খাবার এনে দিতে পারবেন?” 20 তিনি পাথরে আঘাত করলেন এবং বন্যার মতো জলধারা বেরিয়ে এলো| নিশ্চয়ই তিনি আমাদের কিছু রুটি এবং মাংস দিতে পারেন!” 21 ওই লোকগুলো কি বলছে, প্রভু তা শুনলেন| যাকোবের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন| ইস্রায়েলের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন| 22 কেন? কারণ লোকরা তাঁকে বিশ্বাস করে নি| ঈশ্বর য়ে ওদের রক্ষা করতে পারেন, তা ওরা বিশ্বাস করে নি| 23 এর পর ঈশ্বর মেঘকে উন্মুক্ত করে দিলেন এবং খাদ্যের জন্য ওদের ওপরে মান্না বর্ষিত হল| এ য়েন আকাশের দ্বার খুলে গেল এবং স্বর্গের ভাণ্ডার থেকে শস্য়রাশি পড়তে লাগলো| 24 25 লোকরা দেবদূতদেরসেই খাবার খেয়েছিলো| ওদের সন্তুষ্ট করার জন্য ঈশ্বর প্রচুর খাবার পাঠিয়েছিলেন| 26 ঈশ্বর পূর্বদিক থেকে একটা ঝোড়ো বাতাস প্রবাহিত করলেন এবং ওদের কাছে একধরণের পাখি বৃষ্টির মত পড়তে লাগলো| ঈশ্বর তেমানের দিক থেকে সেই বাযুকে প্রবাহিত করালেন এবং য়ে নীল আকাশের দিকটায প্রচুর পাখি ছিল সেই দিকটা অন্ধকারময় হয়ে গেল| 27 28 ওদের তাঁবুর ঠিক মাঝখানে, ওদের তাঁবুর চারপাশে পাখিগুলো পড়ে গিয়েছিল| 29 তাদের কাছে বিরাট খাদ্যের ভাণ্ডার ছিল| কিন্তু তাদের ক্ষুধা তাদের পাপকার্য়্য়ে প্ররোচিত করেছিল| 30 তারা তাদের ভোজন নিযন্ত্রিত করে নি| তাই পাখীগুলোর দেহ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসার আগেই তারা পাখীগুলোকে খেয়ে ফেলেছিল| অতএব, খাবার যখন তাদের মুখের মধ্যে তখনও ছিল তখন ঈশ্বর ওইসব লোকের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হলেন এবং ওদের অনেককে মেরে ফেললেন| ঈশ্বর বহু স্বাস্থ্য়বান তরুণের মৃত্যুর কারণ হলেন| 31 32 ওইসব লোকরা আবার পাপ করলো! ঈশ্বর য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করতে পারেন তার ওপর নির্ভর করলো না| 33 তাই ওদের মূল্যহীন জীবনগুলোতে ঈশ্বর দুর্বিপাক এনে শেষ করে দিলেন| 34 যখনই ঈশ্বর ওদের কাউকে হত্যা করেছেন, অন্যরা তাঁর কাছে ফিরে এসেছেন| ওরা ছুটে ছুটে ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছে| 35 তখন এই সব লোকরা স্মরণ করবে য়ে ঈশ্বরই ছিলেন তাদের শিলা| ওরা তখন মনে করবে য়ে পরাত্পরই একমাত্র ওদের মুক্তিদাতা| 36 ওরা বলেছিলো, ওরা তাঁকে ভালোবাসে কিন্তু ওরা মিথ্যা কথা বলেছিলো| ওই সব লোক একেবারেই আন্তরিক ছিলো না| 37 প্রকৃতপক্ষে ওদের হৃদয় ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলো না| চুক্তির প্রতি ওরা একেবারেই বিশ্বস্ত ছিলো না| 38 কিন্তু ঈশ্বর করুণাময় ছিলেন| তিনি ওদের সব পাপ ক্ষমা করে দিলেন, তিনি কিন্তু ওদের ধ্বংস করেন নি| বহুবার ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ সংবরণ করেছেন| তিনি নিজেকে কখনই অতিরিক্ত ক্রুদ্ধ হতে দেন নি| 39 ঈশ্বর মনে রেখেছিলেন য়ে ওরা ন্যায়পরায়ণ মানুষ| লোকরা বাতাসেরই মত, যারা বয়ে যায় এবং চলে যায়| 40 ওঃ, কতবার ঐ লোকগুলো মরুভূমিতে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে! ওরা তাঁকে কত দুঃখই দিয়েছে! 41 ওই লোকগুলো বার বার ঈশ্বরের ধৈর্য়্য় পরীক্ষা করেছে| ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে ওরা সত্যই ক্রুদ্ধ করেছে| 42 ওই লোকরা ঈশ্বরের পরাক্রমের কথা ভুলে গিয়েছিলো| ঈশ্বর য়ে বহুবার শত্রুদের হাত থেকে ওদের রক্ষা করেছিলেন, তা ওরা ভুলে গিয়েছিলো| 43 মিশরে ঈশ্বর য়ে সব চমত্কার কাজগুলি করেছিলেন তার কথা ওরা ভুলে গিয়েছিলো, সোযন প্রান্তরের চমত্কার কাজের কথা ওরা ভুলে গিয়েছিলো| 44 ঈশ্বর নদীগুলিকে রক্তে পরিণত করেছিলেন! মিশরবাসীরা সেই জল পান করতে পারলো না| 45 ঈশ্বর ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি পাঠালেন যারা মিশরবাসীদের কামড় দিলো, তিনি অগনিত ব্যাঙ পাঠালেন যারা মিশরবাসীর জীবন ধ্বংস করে দিলো| 46 ওদের শস্য়কে ঈশ্বর গঙ্গা ফড়িংযের কবলে এবং ওদের বৃক্ষ লতাকে পঙ্গপালের কবলে করে দিলেন| 47 ঈশ্বর শিলাবৃষ্টির দ্বারা ওদের দ্রাক্ষাক্ষেত নষ্ট করলেন| শিলাবৃষ্টির দ্বারা তিনি ওদের বৃক্ষরাজি ধ্বংস করলেন| 48 শিলাবৃষ্টি দিয়ে তিনি ওদের পশুদের মারলেন এবং বজ্র-বিদ্য়ুত্ দিয়ে গবাদি পশুদের মারলেন| 49 ঈশ্বর মিশরের লোকদের তাঁর ক্রোধ দেখালেন| ওদের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর বিধ্বংসকারী দূতদের পাঠালেন| 50 ক্রোধ প্রদর্শনের জন্য ঈশ্বর একটা রাস্তা পেয়েছিলেন| ওদের একটা লোককেও তিনি বাঁচতে দিলেন না| এক মহামড়কের মধ্যে দিয়ে তিনি ওদের মরতে দিলেন| 51 মিশরের প্রত্যেকটি প্রথমজাত সন্তানকে ঈশ্বর হত্যা করলেন| হাম পরিবারের প্রত্যেকটি প্রথম জাতককে তিনি হত্যা করলেন| 52 তারপর একজন মেষপালকের মত তিনি ইস্রায়েলকে পথ দেখিয়েছিলেন| একজন মেষপালকের মত তিনি তাঁর লোকেদের, মেষপালকের মত জনহীন প্রান্তরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| 53 ঈশ্বর তাঁর লোকদের নিরাপদে চালনা করেছিলেন| তাঁর লোকদের ভয় করার মত কিছু ছিল না| তাদের শত্রুদের তিনি লোহিত সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন| 54 তাঁর পবিত্র ভূখণ্ডে ঈশ্বর তাঁর লোকদের পৌঁছে দিয়েছিলেন| তিনি তাঁর লোকদের নিজ ক্ষমতা বলে পাওয়া সেই পর্বতে য়েটা তিনি রূপ দিয়েছিলেন সেটাতে নিয়ে গেলেন| 55 ঈশ্বর অন্যান্য জাতিদের সেই ভূখণ্ডের থেকে বাইরে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন| প্রত্যেকটি পরিবারকে বাধ্য করিয়েছেন| প্রত্যেকটি পরিবারকে ঈশ্বর সে ভূখণ্ডের অংশ দিয়েছেন| এখান বাস করার জন্য ইস্রায়েলের প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠীকে ঈশ্বর সেই ভূখণ্ডে ঘর দিয়েছেন| 56 কিন্তু ওরা পরাত্পর ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিলো এবং তাঁকে দুঃখী করেছিলো| ওই সব লোক ঈশ্বরের আজ্ঞা মান্য করে নি| 57 ওরা ঠিক ওদের পূর্বপুরুষদের মতই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলো| ওরা একটি বঞ্চক ধনুকের মতদিক পরিবর্তন করেছিলো| 58 ইস্রায়েলের লোকরা উচ্চস্থান তৈরী করেছিলো এবং ঈশ্বরকে ক্রুদ্ধ করেছিলো| তারা মূর্ত্তিসমূহ তৈরী করেছিলো এবং ঈশ্বরকে অত্যন্ত ঈর্ষান্বিত করে তুলেছিল| 59 এই সব শুনে ঈশ্বর ক্রোধান্বিত হয়েছিলেন| ঈশ্বর ইস্রায়েলকে তীব্রভাবে অস্বীকার করেছিলেন! 60 ঈশ্বর পবিত্র তাঁবুটি শীলোতে রেখেছিলেন| সাধারণ লোকদের মধ্যে ঈশ্বর সেই তাঁবুতে থাকতেন| 61 ঈশ্বর অন্য জাতিকে তাঁর লোকদের অধিকার করতে দিয়েছেন| শত্রুরা ঈশ্বরের “সুন্দরতম রত্ন” নিয়ে গিয়েছিলো| 62 ঈশ্বর তাঁর লোকদের বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করলেন| তিনি তাদের যুদ্ধে হত হতে দিলেন| 63 তরুণরা সব পুড়ে মারা গেল এবং য়ে মেযেদের ওরা বিয়ে করবে ভেবেছিলো তারা কেউই বিয়ের গান গাইছিলো না| 64 যাজকরা মারা গেল কিন্তু তাদের বিধবারা ওদের জন্য কাঁদে নি| 65 শেষ কালে, য়েমন করে একজন লোক ঘুম থেকে ওঠে, প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করে য়েমন একজন সৈনিক ওঠে, তেমন করে আমাদের প্রভু উঠলেন| 66 ঈশ্বর তাঁর শত্রুদের জোর করে হঠিযে দিয়ে ওদের পরাজিত করালেন| ঈশ্বর তাঁর শত্রুদের পরাজিত করে চিরদিনের জন্য ওদের অসম্মানিত করলেন| 67 তারপর ঈশ্বর য়োষেফের তাঁবুটিকেবাতিল করলেন এবং ইফ্রযিমের শাসন ক্ষমতা কেড়ে নিলেন| 68 তারপর ঈশ্বর যিহূদা জাতিকে শাসক জাতি হিসেবে মনোনীত করলেন এবং তাঁর প্রিয জেরুশালেমকে মন্দির নির্মাণের স্থান হিসেবে বেছে নিলেন| 69 সেই পাহাড়ের উঁচু জায়গায় ঈশ্বর তাঁর মন্দির নির্মাণ করলেন| পৃথিবীর মত তিনি তাঁর মন্দির চিরকালের জন্য স্থাপন করলেন| 70 ঈশ্বর তাঁর বিশেষ সেবকরূপে দায়ূদকে মনোনীত করলেন| দায়ূদ মেষ চরাচ্ছিলো, কিন্তু ঈশ্বর সেই কাজ থেকে তাকে নিয়ে এলেন| 71 ঈশ্বর দায়ূদকে, তাঁর লোকদের মেষপালক হওয়ার দায়িত্ব, যাকোবের লোকদের দায়িত্ব এবং ইস্রায়েলের লোকদের ও তাদের সম্পত্তির দায়িত্ব দিয়েছিলেন| 72 দায়ূদ পবিত্র মনে তাদের নেতৃত্ব দিলেন| তিনি খুব প্রজ্ঞার সঙ্গে তাদের পরিচালিত করলেন|
1 হে ঈশ্বর, অন্য জাতিসমূহের কিছু লোক আপনার লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসেছিলো| ওই সব লোক আপনার পবিত্র মন্দির ধ্বংস করেছে| ওরা জেরুশালেমকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে| 2 হিংস্র পাখীদের খাওয়ানোর জন্য ওরা আপনার সেবকদের দেহ ফেলে রেখে গেছে| বুনো পশুদের খাওয়ানোর জন্য ওরা আপনার অনুগামীদের দেহ ফেলে রেখে গেছে| 3 হে ঈশ্বর, য়তক্ষণ না জলের মত রক্ত বয়েছে, ততক্ষণ পর্য়ন্ত ওরা আপনার লোকদের হত্যা করেছে, মৃতদেহগুলোকে কবর দেওয়ার মত একজনও অবশিষ্ট নেই| 4 আমাদের চারপাশের দেশগুলো আমাদের অপমান করেছে| আমাদের চারপাশের লোকেরা আমাদের নিয়ে উপহাস করেছে এবং আমাদের নিয়ে মজা করেছে| 5 ঈশ্বর, চিরদিনই কি আপনি আমাদের প্রতি ক্রুদ্ধ থাকবেন? আপনার তীব্র আবেগ কি আগুনের মতই জ্বলতে থাকবে? 6 হে ঈশ্বর, য়ে সব জাতি আপনাকে জানে না তাদের ওপর আপনার ক্রোধ দেখান| সেই সব রাজ্য যারা আপনার নামের উপাসনা করে না, তাদের ওপর আপনার ক্রোধ উজাড় করে দিন| 7 ওইসব জাতি যাকোবকে বিনষ্ট করেছে| ওরা যাকোবের দেশকে ধ্বংস করেছে| 8 ঈশ্বর, আমাদের পূর্বপুরুষের পাপের জন্য আমাদের শাস্তি দেবেন না| শীঘ্রই আপনার করুণা প্রদর্শন করুন! আমাদের ভীষণভাবে আপনাকে প্রযোজন! 9 হে আমাদের পরিত্রাতা ঈশ্বর, আমাদের সাহায্য করুন! সাহায্য করুন! পরিত্রাণ করুন! তা আপনার নামের মহিমা এনে দেবে| আপনার নামের ধার্ম্মিকতার জন্য আমাদের পাপ মুছে দিন| 10 আমাদের উদ্দেশ্যে, অন্য জাতিকে এই কথা বলতে দেবেন না, “কোথায তোমাদের ঈশ্বর? তিনি কি তোমাদের সাহায্য করতে পারেন না?” ঈশ্বর, ঐ লোকদের শাস্তি দিন এবং সেই শাস্তি য়েন আমরা দেখতে পাই| আপনার সেবকদের হত্যা করার জন্য ওদের শাস্তি দিন| 11 দয়া করে বন্দীদের আর্তনাদ শুনুন! ঈশ্বর, যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, আপনার মহত্ শক্তি ব্যবহার করে তাদের রক্ষা করুন| 12 হে ঈশ্বর, আমাদের চারপাশের লোকরা আমাদের সঙ্গে য়ে ব্যবহার করেছে, তার জন্য ওদের আপনি সাত গুণ বেশী শাস্তি দিন| আপনাকে অপমান করার জন্য ওদের শাস্তি দিন| 13 আমরা আপনারই লোক| আমরাই আপনার পালের মেষ| আমরা চিরদিন আপনার প্রশংসা করবো| ঈশ্বর, আদি অনন্তকাল ধরে আমরা আপনার প্রশংসা করবো!
1 হে ইস্রায়েলের মেষপালক, আমার কথা শুনুন| আপনি য়োষেফের লোকদের মেষের মত পরিচালিত করেছেন| করূব দূতের ওপর আপনি রাজার মত বসেন| আপনাকে আমাদের দেখতে দিন| 2 হে ইস্রায়েলের মেষপালক ইফ্রযিম, বিন্যামীন এবং মনঃশির প্রতি আপনার মহত্ব প্রদর্শন করুন| আপনি এসে আমাদের রক্ষা করুন| 3 ঈশ্বর, পুনর্বার আমাদের গ্রহণ করুন| আমাদের গ্রহণ করুন| আমাদের রক্ষা করুন! 4 প্রভু, হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, কখন আপনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন? আপনি কি চিরদিনের মত আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে থাকবেন? 5 খাদ্য হিসেবে আপনার লোকদের আপনি চোখের জল দিয়েছেন| আপনার লোকদের আপনি তাদেরই চোখের জলে ভর্তি গামলা দিয়েছেন| সেটাই ছিল তাদের পানীয় জল| 6 আমাদের শত্রুদের জন্য আপনি আমাদের ঝগড়ার কারণ হবার লক্ষ্য বানিয়েছেন এবং শত্রুরা আমাদের বিদ্রূপ করে| 7 হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, পুনরায আমাদের গ্রহণ করুন| আমাদের গ্রহণ করুন| আমাদের রক্ষা করুন| 8 অতীতে আপনি আমাদের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ চারা গাছের মতই যত্ন নিয়েছিলেন| মিশর থেকে আপনি আপনার “দ্রাক্ষালতা” এনেছিলেন| অন্যান্য লোকদের আপনি এদেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং আপনার “দ্রাক্ষালতা” আপনি এখানে রোপণ করেছিলেন| 9 সেই “দ্রাক্ষালতার” জন্য আপনি জমি তৈরী করেছিলেন| এর শিকড়গুলোকে আপনি জমির গভীরে বাড়তে সাহায্য করেছিলেন| খুব তাড়াতাড়ি এই “দ্রাক্ষালতা” সারা দেশ ছেযে ফেলেছে| 10 এটি পর্বতকে ঢেকে দিয়েছে| এর পাতাগুলি বৃহত্ এরস গাছকেও ছায়া দিয়েছে| 11 এই দ্রাক্ষালতা ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত ছড়িয়ে পড়বে| এর লতাপাতা ফরাত্ নদী পর্য়ন্ত বিস্তৃত হবে| 12 ঈশ্বর, য়ে প্রাচীর আপনার “দ্রাক্ষালতাকে” রক্ষা করতো, কেন তাকে ভেঙে ফেললেন? এখন য়ে কোন ব্যক্তিই এর ধার দিয়ে যায়, সেই এর দ্রাক্ষা তুলে নিয়ে যায়| 13 বুনো শূকররা এসে আমাদের “দ্রাক্ষাক্ষেতে” ঘুরে বেড়ায| বুনো জন্তুরা এসে এর পাতা খায়| 14 হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আপনি আসুন| স্বর্গ থেকে আপনার দ্রাক্ষাক্ষেত দেখুন এবং তাকে রক্ষা করুন| 15 হে ঈশ্বর, নিজ হাতে য়ে “দ্রাক্ষালতা” আপনি লাগিয়েছিলেন, তার দিকে দেখুন| য়ে চারাগাছকেআপনি বড় হতে দিয়েছেন তার দিকে দেখুন| 16 শুকনো গোবরের মত আপনার “দ্রাক্ষালতা” পুড়ে গিয়েছিলো| আপনি এর প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে একে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন| 17 হে ঈশ্বর, য়ে সন্তান আপনার ডানদিকে দাঁড়িয়ে ছিল তার দিকে হাত বাড়ান| য়ে সন্তানকে আপনি বড় করেছেন তার দিকে হাত বাড়ান| 18 সে আর আপনাকে ছেড়ে যাবে না| তাকে বাঁচতে দিন, সে আপনার নামের উপাসনা করবে| 19 হে প্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আমাদের কাছে ফিরে আসুন| আমাদের গ্রহণ করুন| আমাদের রক্ষা করুন|
1 সুখী হও এবং আমাদের শক্তিদাতা ঈশ্বরের কাছে গান গাও| ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে আনন্দ ধ্বনি দাও| 2 সঙ্গীত শুরু কর| খঞ্জনীগুলি বাজাও| সুশ্রাব্য বীণা এবং অন্যান্য তন্ত্রবাদ্য বাজাও| 3 অমাবস্যার সময় মেষের শিঙা বাজিও| পূর্ণিমার দিনে যখন আমাদের ছুটির উত্সব হয় তখন শিঙা বাজিও| 4 ইস্রায়েলের লোকের জন্য এটাই বিধি| ঈশ্বর যাকোবকে সেই আজ্ঞা দিয়েছিলেন| 5 ঈশ্বর যখন য়োষেফকেমিশর থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই সময় তিনি তাঁর সঙ্গে এই চুক্তি করেছিলেন| মিশরে আমরা একটা ভাষা শুনেছিলাম, য়েটা আমরা বুঝতে পারি নি| 6 ঈশ্বর বলেন, “তোমার কাঁধ থেকে ভারী বোঝা আমি নিয়েছিলাম এবং তোমার হাতের ভারী ঝাঁকাগুলিও আমি বিলি করেছিলাম| 7 তোমরা সমস্যার মধ্যে ছিলে| তোমরা সাহায্য চেয়েছিলে| আমি তোমাদের মুক্ত করে দিলাম| ঝড়ের মেঘের মধ্যে আমি লুকিয়েছিলাম এবং আমি তোমাদের উত্তর দিয়েছিলাম| মরীবার জলের ধারে আমি তোমাদের পরীক্ষা করেছিলাম| 8 “হে আমার লোকজন, আমার কথা শোন| তোমাদের আমি আমার চুক্তি দেব| হে ইস্রায়েল, আমার কথা শোন! 9 বিদেশীরা য়ে সব মূর্ত্তি পূজা করে, তোমরা তাদের উপাসনা কর না| 10 আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, য়ে তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলাম| হে ইস্রায়েল, তোমার মুখ খোল, আমি তোমাকে আহার দেবো| 11 “কিন্তু আমার লোকরা আমার দিকে মনোযোগ দেয় নি| ইস্রায়েল আমায় মানে নি| 12 তাই ওরা যা করতে চেয়েছিলো, আমি ওদের তাই করতে দিয়েছি| ইস্রায়েলীয়রা যা করতে চেয়েছিলো, তাই করেছে| 13 যদি আমার লোকরা আমার কথা শুনতো এবং আমি য়ে ভাবে চাই সেভাবে বাঁচতো, 14 তাহলে আমি ওদের শত্রুদের পরাজিত করতাম| যারা ইস্রায়েলে সংকটসমূহ নিয়ে আসবে তাদের আমি শাস্তি দেব| 15 প্রভুর শত্রুরা ভয়ে কেঁপে য়েতো| চিরদিনের জন্য ওরা শাস্তি পেতো| 16 ঈশ্বর তাঁর লোকদের সবার সেরা গম দিতেন| য়তক্ষণ না তারা পরিতৃপ্ত হয়, ততক্ষণ তাঁর লোকদের ঈশ্বর মধু দেবেন|
1 ঈশ্বর দেবতাদের মণ্ডলীতেদাঁড়ান| দেবতাদের সেই সভায তিনিই ছিলেন বিচারক| 2 ঈশ্বর বলেন, “কতদিন তোমরা অন্যায়ভাবে লোকের বিচার করবে? আর কতদিন তোমরা দুষ্ট লোকদের শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দেবে?” 3 “দরিদ্র লোকদের এবং অনাথদের বিচার কর| ওই সব দরিদ্র লোকদের অধিকারকে রক্ষা কর| 4 ওই সব অসহায় ও দরিদ্রদের সাহায্য কর| দুষ্ট লোকদের থেকে ওদের রক্ষা কর| 5 “কে ঘটে চলেছে তা ওরা জানে না| ওরা বোঝে না! ওরা য়ে কি করছে তা ওরা জানে না, ওদের চারপাশে ওদের পৃথিবী ভেঙে পড়েছে!” 6 আমি ঈশ্বর বলছি, “তোমরা দেবতা| তোমরা পরাত্পরের সন্তানগণ| 7 য়েমন ভাবে সাধারণ মানুষ অবশ্যই মরে, তোমরাও সেই ভাবেই মারা যাবে|” 8 ঈশ্বর, আপনি উঠুন! আপনিই বিচারক হন! ঈশ্বর, সব জাতির ওপরে আপনিই নেতা হন!
1 ঈশ্বর, নীরব থাকবেন না! কান বন্ধ করে রাখবেন না! ঈশ্বর আপনি কিছু বলুন| 2 ঈশ্বর, শত্রুরা আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং খুব শীঘ্রই ওরা আক্রমণ করবে| 3 আপনার লোকদের বিরুদ্ধে ওরা ফন্দি আঁটছে| য়ে লোকদের আপনি ভালোবাসেন, আপনার শত্রুরা তাদের বিরুদ্ধে শলাপরামর্শ করছে| 4 ওই শত্রুরা বলাবলি করছে, “এস, আমরা ওদের পুরোপুরি ধ্বংস করে দিই| তাহলে কোন ব্যক্তি আর কোনদিনের জন্যও ‘ইস্রায়েলের’ নাম স্মরণ করবে না|”‘ 5 ঈশ্বর, ওই সব লোক আপনার বিরুদ্ধে এবং আমাদের সঙ্গে আপনি য়ে চুক্তি করেছেন, তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, এক জোট হয়েছে| 6 ওই শত্রুরা আমাদের সঙ্গে লড়াই করবে বলে এক জোট হয়েছে: ওদের মধ্যে যারা রয়েছে তারা হলো ইদোমবাসী, ইশ্মাযেলীয, মোযাব ও হাগারের উত্তরপুরুষ, গবাল, অম্মোন ও অমালেকের অধিবাসী, সোর দেশের লোক এবং পলেষ্টীয় লোকেরা| ওই সব লোক আমাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য একজোট হয়েছে| 7 8 এমনকি অশূরীয়রাও ওদের সঙ্গে য়োগ দিয়েছে| লোটের উত্তরপুরুষদেরওরা খুব শক্তিশালী করেছে| 9 ঈশ্বর কীশোন নদীর কাছে, য়েমন করে আপনি মিদিযনদের পরাজিত করেছিলেন, য়েমন করে আপনি সীষরা ও যাবীনকে পরাজিত করেছিলেন তেমন করে আপনি ওই শত্রুদের পরাজিত করুন| 10 ঐন্দোরে আপনি ওদের পরাজিত করেছিলেন| মাটিতেই ওদের দেহগুলো পচে গিয়েছিলো| 11 ঈশ্বর, ওই শত্রু নেতাদের পরাজিত করুন| ওরেব ও সেবদের প্রতি আপনি যা করেছিলেন ওদের প্রতিও তাই করুন| সেবহ ও সল্মুন্নের প্রতি আপনি যা করেছিলেন ওদের প্রতিও তাই করুন| 12 ঈশ্বর, ওই লোকরা আমাদের আপনার ভূখণ্ড থেকে বের করে দিতে চেয়েছিল| 13 হে ঈশ্বর, খড় কুটো য়েমন বাতাসে উড়ে যায়, তেমনি ভাবে আপনি ওদের উড়িযে দিন| ঝোড়ো হাওযায় খড় য়েমন ছড়িয়ে যায় তেমনি ভাবে ওদের ইতঃস্তত ছড়িয়ে দিন| 14 দাবানল য়েমন করে অরণ্য ধ্বংস করে, লেলিহান আগুন য়েমন করে পাহাড় পুড়িয়ে দেয় তেমন করে আপনি শত্রুদের ধ্বংস করুন| 15 হে ঈশ্বর, ঝড় য়েমন করে ধূলো উড়িযে নিয়ে যায় তেমনি করে আপনি ওই লোকেদের তাড়া করুন| টর্নেডোর মত ওদের কাঁপিয়ে দিন, ওদের উড়িযে দিন| 16 ঈশ্বর, আপনি ওদের এমন শিক্ষা দিন যাতে ওরা বুঝতে পারে ওরা প্রকৃতই দুর্বল| তখন ওরা আপনার নামের উপাসনা করতে চাইবে! 17 ঈশ্বর, চিরদিনের মত ওদের ভীত ও লজ্জিত করে দিন| ওদের অপমানিত ও বিনষ্ট করুন| 18 তখন ওরা বুঝতে পারবে য়ে, আপনিই ঈশ্বর| ওরা জানতে পারবে য়ে, আপনিই একমাত্র পরাত্পর, সারা পৃথিবীর ঈশ্বর!
1 হে সর্বশক্তিমান প্রভু, আপনার মন্দির সত্যিই অমূল্য! 2 আপনার মন্দিরে ঢুকতে গেলে আমি প্রতীক্ষা করতে পারি না| আমি অত্যন্ত উত্তেজিত! আমার প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জীবন্ত ঈশ্বরের সঙ্গে থাকতে চায়| 3 হে সর্বশক্তিমান প্রভু, আমার রাজা, আমার ঈশ্বর, পাখিরা পর্য়ন্ত আপনার মন্দিরে তাদের আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে| আপনার বেদীর কাছেই ওরা বাসা বেঁধেছে এবং ওদের শাবকও আছে| 4 যারা আপনার মন্দিরে বাস করছে তারা খুবই ভাগ্যবান| ওরা এখনও আপনার প্রশংসা করছে| 5 হৃদয়ে সঙ্গীত নিয়ে য়েসব লোকেরা আপনার মন্দিরে আসছে তারা খুব খুশী! 6 তারা নির্ঝরের মত, বাকা উপত্যকা, য়েটি ঈশ্বর তৈরী করেছিলেন, সেটা পার হয়ে যাত্রা করে| শরতের বৃষ্টিতে পুকুরগুলো ভরে রয়েছে| 7 লোকরা য়ত ঈশ্বরের কাছে যায় তত শক্তিশালী হয়| 8 হে সর্বশক্তিমান প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন| হে যাকোবের ঈশ্বর, আমার কথা শুনুন| 9 হে ঈশ্বর, আমাদের রক্ষাকর্তাকে সুরক্ষা দিন| আপনার মনোনীত রাজার প্রতি সদয় হোন| 10 অন্য জায়গায় এক হাজার দিন কাটানোর চেয়ে আপনার মন্দিরে একদিন কাটানো অনেক ভালো| একজন দুষ্ট লোকের ঘরে বাস করার চেয়ে আমার ঈশ্বরের গৃহের দ্বারে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক ভালো| 11 প্রভুই আমাদের রক্ষাকারী ও মহিমময় রাজা|ঈশ্বর দয়া ও মহিমার সঙ্গে আমাদের আশীর্বাদ করেন| য়ে সব লোক তাঁকে অনুসরণ করে ও মান্য করে ঈশ্বর তাদের ভালো জিনিসগুলি দেন| 12 হে সর্বশক্তিমান প্রভু, যারা আপনাকে বিশ্বাস করে তারা প্রকৃতই সুখী! 13
1 প্রভু, আপনার রাজ্য়ের প্রতি সদয় হোন| যাকোবের লোকেরা বিদেশে নির্বাসিত| নির্বাসিতদের ওদের নিজের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন| 2 প্রভু, আপনার লোকেদের ক্ষমা করে দিন! ওদের পাপ মুছে দিন! 3 প্রভু, আর ক্রুদ্ধ হবেন না| রাগে আত্মহারা হবেন না| 4 হে আমাদের পরিত্রাতা ঈশ্বর, আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ হওয়া থেকে বিরত হোন এবং আবার আমাদের গ্রহণ করুন| 5 চিরদিনই কি আপনি আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ থাকবেন? 6 আবার আমাদের “জীবন্ত” করে দিন! আপনার লোকদের সুখী করুন| 7 প্রভু আমাদের রক্ষা করুন এবং আপনি য়ে আমাদের ভালোবাসেন তা প্রদর্শন করুন| 8 প্রভু ঈশ্বর কি বলেছেন তা আমি শুনেছি| তিনি বলেছেন, তাঁর লোকদের জন্য ও তাঁর অনুগামীদের জন্য শাস্তি থাকবে| তিনি আরও বলেছেন, তাই ওদের আর কখনও নির্বোধ জীবনযাত্রায ফিরে যাওয়া উচিত্ হবে না| 9 ঈশ্বর তাঁর অনুগামীদের খুব শীঘ্রই রক্ষা করবেন| আমরা খুব শীঘ্রই সম্মানের সঙ্গে আমাদের ভূখণ্ডে বাস করবো| 10 তারা সত্য এবং করুণাকে অভিনন্দন জানাবে| তারা শান্তি ও ধার্ম্মিকতাকে চুমু খাবে| 11 পৃথিবীর লোকরা ঈশ্বরের প্রতি নিষ্ঠাবান হবে| স্বর্গ থেকে ঈশ্বর ওদের মঙ্গল করবেন| 12 প্রভু আমাদের অনেক ভালো জিনিস দেবেন| জমিগুলো প্রচুর পরিমাণে ভালো শস্য় দেবে| 13 ধার্ম্মিকতা ঈশ্বরের আগে আগে যাবে এবং তাঁর চলার পথ প্রস্তুত করবে| 14
1 আমি একজন দীন, অসহায় মানুষ| প্রভু আমার কথা দয়া করে শুনুন এবং আমার প্রার্থনার উত্তর দিন| 2 প্রভু, আমি আপনার অনুগামী| অনুগ্রহ করে আমায় রক্ষা করুন! আমি আপনার দাস, আপনি আমার ঈশ্বর| আমি আপনাতে বিশ্বাস করি, তাই আমায় রক্ষা করুন| 3 হে আমার প্রভু, আমার প্রতি সদয় হোন| সারাদিন ধরে আমি আপনার দাস| তাই আমায় সুখী করুন| 4 প্রভু, আমার জীবন আমি আপনার হাতে দিলাম| আমি আপনার দাস| তাই আমায় সুখী করুন| 5 প্রভু, আপনি মঙ্গলময় এবং করুণাময়| আপনার লোকেরা সাহায্যের জন্য আপনাকে ডাকে| প্রকৃতই আপনি ওই সব লোককে ভালোবাসেন| 6 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন| করুণার জন্য আমার প্রার্থনা শুনুন| 7 প্রভু, আমার সঙ্কটের সময়ে আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি| আমি জানি আপনি আমায় উত্তর দেবেন! 8 ঈশ্বর, আপনার মত কেউই নেই| আপনি যা করেছেন তা আর কেউ করতে পারবে না| 9 প্রভু, আপনিই প্রত্যেকটি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন| ওরা সবাই য়েন এসে আপনার উপাসনা করে| ওদের সকলে য়েন আপনার নামের সম্মান করে| 10 ঈশ্বর, আপনি মহান! আপনি আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন! আপনি একমাত্র আপনিই ঈশ্বর! 11 প্রভু, আপনার পথ সম্পর্কে আমায় শিক্ষা দিন এবং আমি আপনার সত্য পথ অবলম্বন করে বেঁচে থাকবো| আপনার উপাসনা করাকে আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় করতে আমায় সাহায্য করুন| 12 ঈশ্বর, প্রভু আমার, আমার সকল অন্তর দিয়ে আমি আপনার প্রশংসা করি| চিরদিন আমি আপনার নামের সম্মান করবো! 13 ঈশ্বর আপনি আমার জন্য কত মহান ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন এবং মৃত্যুর হাত থেকে আমায় রক্ষা করেছেন| 14 ঈশ্বর, অহঙ্কারী লোকরা আমায় আক্রমণ করছে| একদল নৃশংস লোক আমায় হত্যার চেষ্টা করছে| ওই সব লোক আপনাকে সম্মান করে না| 15 প্রভু, আপনি দয়াময় ও করুণাময় ঈশ্বর| আপনি ধৈর্য়্য়শীল, বিশ্বস্ত এবং প্রেমে পরিপূর্ণ| 16 ঈশ্বর, আমার প্রতি সদয় হোন এবং দেখান য়ে আপনি আমার কথা শুনেছেন| আমি আপনার দাস, আমায় শক্তি দিন| আমি আপনার দাস, আমায় রক্ষা করুন! 17 ঈশ্বর, আপনি য়ে আমায় সাহায্য করবেন তা প্রদর্শন করে আমায় একটা চিহ্ন দিন| আমার শত্রুরা সেই চিহ্ন দেখবে এবং ওরা হতাশ হবে| সেটা প্রমাণ করবে য়ে আপনি আমার প্রার্থনা শুনেছেন এবং আপনি আমাকে সাহায্য করবেন|
1 জেরুশালেমের পবিত্র পাহাড়ে ঈশ্বর তাঁর মন্দির নির্মাণ করেছেন| 2 ইস্রায়েলের য়ে কোন জায়গার চেয়ে সিয়োনের ফটকগুলোকে ঈশ্বর অনেক বেশী ভালোবাসেন| 3 হে ঈশ্বরের নগরী, লোকে তোমার সম্পর্কে বিস্ময়কর কথা বলে| 4 ঈশ্বর তাঁর সব লোকের তালিকা রাখেন| ওদের মধ্যে কিছু লোক মিশর ও বাবিলে বাস করে| ওদের মধ্যে কিছু লোক পলেষ্টীয়, সোর ও কূশ দেশে জন্মগ্রহণ করেছিলো| 5 যারা সিয়োনে জন্মেছে, তাদের প্রত্যেককে ঈশ্বর চেনেন| পরাত্পর এই নগর নির্মাণ করেছেন| 6 ঈশ্বর, তাঁর সব লোকদের তালিকা রেখেছেন| প্রত্যেকটি লোক কোথায জন্মেছে তা ঈশ্বর জানেন| 7 ঈশ্বরের লোকরা বিশেষ ছুটি উদয়াপন করতে জেরুশালেমে যায়| ওরা প্রচণ্ড সুখী| ওরা নাচছে এবং গাইছে| ওরা বলে, “জেরুশালেম থেকেই সব ভালো জিনিস আসে|”
1 প্রভু ঈশ্বর, আপনিই আমার পরিত্রাতা| দিন রাত্রি ধরে আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি| 2 আমার প্রার্থনার দিকে মনোযোগ দিন| করুণার জন্য আমার প্রার্থনা শুনুন| 3 আমার আত্মা এই যন্ত্রণায় অনেক কষ্ট পেয়েছে! খুব তাড়াতাড়ি আমি মারা যাবো| 4 ইতিমধ্যেই লোকরা আমার সঙ্গে সেই রকম আচরণ শুরু করেছে, যা একজন মৃতের প্রতি করা হয়, অথবা একজন লোক য়ে বেঁচে থাকার পক্ষে খুব দুর্বল তার সঙ্গে য়েমন ব্যবহার করা হয়| 5 ওরা মৃতদের মধ্যে আমাকে খোঁজে| আমি সেই মৃত লোকের মত কবরে পড়ে আছি, য়ে মৃত লোককে আপনি ভুলে গেছেন, য়ে আপনার থেকে এবং আপনার যত্ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে| 6 আপনি আমাকে মাটির সেই গর্তে পুরে দিয়েছেন| হ্যাঁ, আপনি আমাকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছেন| 7 হে ঈশ্বর, আপনি আমার প্রতি ক্রোধান্তিত ছিলেন এবং আপনি আমায় শাস্তি দিয়েছেন| 8 আপনি আমার বন্ধুদের আমায় ছেড়ে য়েতে বাধ্য করেছেন| অচ্ছুত লোকের মত ওরা সবাই আমাকে এড়িয়ে যায়| আমি গৃহবন্দী হয়ে আছি, আমি বাইরে য়েতে পারি না| 9 যন্ত্রণায় কেঁদে কেঁদে আমার চোখ টন্টন্ করছে| প্রভু, সারাক্ষণ আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি! প্রার্থনার সময় আমার দুটি বাহু আমি আপনার দিকে তুলে ধরি| 10 প্রভু, আপনি কি মৃত লোকদের জন্য অলৌকিক কাজসমূহ করেন? প্রেতরা কি জেগে উঠে আপনার প্রশংসা করে? না! 11 কবরে থাকা লোকরা কি আপনার সত্য প্রেম সম্বন্ধে কথা বলতে পারে? মৃত্যুর জগতে থাকা লোকেরা কি আপনার বিশ্বস্ততার কথা বলতে পারে? না! 12 য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় আপনি করেন, অন্ধকারে থাকা মৃতরা তা দেখতে পায় না| বিস্মৃতির দেশে মৃত লোকেরা আপনার ধার্ম্মিকতার কথা বলতে পারে না| 13 প্রভু, আমাকে সাহায্য করার জন্য আপনার কাছে প্রার্থনা জানাচ্ছি! প্রত্যেকদিন উষাকালে আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি| 14 প্রভু কেন আপনি আমায় ত্যাগ করেছেন? কেন আপনি আমার কথা শুনতে পান না? 15 তরুণ বযস থেকেই আমি অসুস্থ ও দুর্বল| আমি আপনার ক্রোধ ভোগ করেছি| আমি আপনার ক্রোধের শিকার হয়েছি| আমি অসহায়! 16 প্রভু, আপনার ক্রোধ আমাকে ধ্বংস করেছে| 17 জ্বালা-যন্ত্রণা আমার নিত্যসঙ্গী| আমার মনে হচ্ছে য়েন, আমি আমার জ্বালা-যন্ত্রণায় ডুবে যাচ্ছি| 18 প্রভু, আমার প্রিযজন ও বন্ধুদের থেকে আপনি আমার বিচ্ছিন্ন করেছেন| একমাত্র অন্ধকারই আমার সঙ্গী হওয়ার জন্য অবশিষ্ট রয়েছে|
1 প্রভুর প্রেম সম্পর্কে আমি সর্বদাই গান গাইবো| তাঁর বিশ্বস্ততা সম্পর্কে আমি চিরকাল এবং অনন্তকাল গাই গাইবো! 2 প্রভু, আমি সত্যিই বিশ্বাস করি য়ে আপনার ভালোবাসা চিরন্তন! আপনার বিশ্বস্ততা আকাশের মত থেকে যায়! 3 ঈশ্বর বলেছেন, “আমার মনোনীত রাজার সঙ্গে আমি একটি চুক্তি করেছি| আমার দাস দায়ূদের কাছে আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি| 4 দায়ূদ, তোমার পরিবারকে আমি চিরদিন বাঁচিয়ে রাখবো| তোমার রাজ্যকে আমি চিরকাল অব্যাহত রাখতে সাহায্য করব|” 5 প্রভু, আপনি আশ্চর্য়্য় কার্য্য্য় করেন| এই জন্য আকাশ আপনার প্রশংসা করে| লোকেরা আপনার ওপর নির্ভর করতে পারে| পবিত্র লোকেদের মণ্ডলীতে শুধুমাত্র এই সম্পর্কেই গান করে| 6 স্বর্গে প্রভুর সমকক্ষ কেউ নেই| অন্য কোন “দেবতার” সঙ্গে প্রভুকে তুলনা করা চলে না| 7 ঈশ্বর পবিত্র লোকেদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন| ওই পবিত্র দূতেরা তাঁর চারপাশে জড়ো হয়| ওরা ঈশ্বরকে ভয় ও শ্রদ্ধা করে| ওরা তাঁর ভয়ে দাঁড়িয়ে থাকে| 8 হে প্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আপনার মত কেউই নয়| আমরা সম্পূর্ণভাবে আপনাকে বিশ্বাস করতে পারি| 9 আপনি পরাক্রমশালী সমুদ্রকে শাসন করেন, এর উত্তাল তরঙ্গমালাকে আপনি শান্ত করে দিতে পারেন| 10 হে ঈশ্বর, আপনি রহবকে পরাজিত করেছিলেন| আপনার শক্তিশালী বাহু বলে আপনি আপনার শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করেছিলেন| 11 হে ঈশ্বর, স্বর্গ এবং মর্য়্ত আপনার অধিকারভুক্ত| এই পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব কিছুই আপনি সৃষ্টি করেছেন| 12 উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্য়ন্ত যা কিছু রয়েছে সবই আপনি সৃষ্টি করেছেন| তাবোর ও হর্ম্মোণ পর্বত আপনার নামের প্রশংসা করছে| 13 আপনার বাহু পরাক্রমবিশিষ্ট! আপনার হস্ত শক্তিমান! বিজয়ী হয়ে আপনার ডানহাত উপরের দিকে ওঠে! 14 সত্য ও ন্যায় বিচারের ওপর আপনার রাজ্য প্রতিষ্ঠিত| প্রেম এবং বিশ্বাস আপনার রাজাসনের দাস| 15 ঈশ্বর, আপনার নিষ্ঠাবান অনুগামীরা সত্যিই সুখী| তারা আপনার করুণার আলোকে বাস করে| 16 আপনার নাম সর্বদাই তাদের সুখী করে| তারা আপনার ধার্ম্মিকতার প্রশংসা করে| 17 আপনি তাদের বিস্ময়কর শক্তি| তাদের শক্তি আপনার কাছ থেকে আসে| 18 প্রভু, আপনিই আমাদের রক্ষাকর্তা| ইস্রায়েলের পবিত্র একজনই আমাদের রাজা| 19 আপনার বিশ্বস্ত অনুগামীদের সঙ্গে আপনি এক স্বপ্নদর্শনের কথা বলেছিলেন, “জনতার মধ্যে থেকে আমি একজন তরুণকে মনোনীত করেছি| আমি সেই তরুণকে একজন গুরুত্বপূর্ণ লোক করে তুলেছি| সেই তরুণ সৈন্যকে আমি শক্তিশালী করেছি| 20 আমার দাস দায়ূদকে আমি খুঁজে পেয়েছি| বিশেষ তৈল দ্বারা আমি দায়ূদকে অভিষিক্ত করেছি| 21 আমার ডান হাত দিয়ে আমি দায়ূদকে সহায়তা দিয়েছি এবং আমার শক্তি দিয়ে আমি তাকে শক্তিশালী করেছি| 22 এই মনোনীত রাজাকে শত্রুরা পরাজিত করতে পারে নি| দুষ্ট লোকরা ওকে হারাতে পারে নি| 23 আমি ওর শত্রুদের শেষ করে দিয়েছি| যারা আমার মনোনীত রাজাকে ঘৃণা করেছে, তাদের আমি পরাজিত করেছি| 24 য়ে রাজাকে আমি পছন্দ করেছি, তাকে আমি সর্বদা ভালোবাসবো ও সমর্থন করবো| সর্বদাই আমি তাকে শক্তিশালী করে তুলবো| 25 আমার মনোনীত রাজাকে আমি সমুদ্রের দায়িত্ব দিয়েছি| নদীগুলোকে সে নিয়ন্ত্রণ করবে| 26 সে আমাকে বলবে, “আপনিই আমার পিতা| আপনিই আমার ঈশ্বর, আমার শিলা, আমার পরিত্রাতা|” 27 আমি তাকে আমার প্রথম জাত সন্তান করবো| সে পৃথিবীর সব রাজাদের ওপরে মহারাজা হবে| 28 আমার প্রেম, ওই মনোনীত রাজাকে সব সময়েই রক্ষা করবে| ওর সঙ্গে আমার চুক্তি কোনদিন শেষ হবে না| 29 আমি ওর পরিবারকে চিরকাল অব্যাহত রাখব| ওর রাজ্য স্বর্গগুলির মতই চিরদিন বজায় থাকবে| 30 ওর উত্তরপুরুষরা যদি আমার বিধি ত্যাগ করে, যদি ওরা আমায় মান্য করা থেকে বিরত হয়, আমি ওদের শাস্তি দেবো| 31 যদি আমার মনোনীত রাজার উত্তরপুরুষরা আমার বিধি আজ্ঞা উপেক্ষা করে, 32 তাহলে আমি ওদের ভযানক শাস্তি দেবো| 33 কিন্তু ওদের ওপর থেকে কখনও আমার ভালোবাসা প্রত্যাহার করবো না| সর্বদাই আমি ওদের প্রতি বিশ্বস্ত থাকবো| 34 দায়ূদের সঙ্গে আমি কখনও আমার চুক্তি ভঙ্গ করবো না| আমি আমাদের চুক্তির পরিবর্তনও করবো না| 35 আমার পবিত্রতা দিয়ে, আমি ওকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি| দায়ূদের সঙ্গে আমি কখনই মিথ্যাচার করবো না! 36 দায়ূদের পরিবার চিরদিনের জন্য অব্যাহত থাকবে| য়তকাল সূর্য় থাকবে ততকাল ওর রাজ্য বজায় থাকবে| 37 চাঁদের মতই ওর রাজত্ব চিরদিন বজায় থাকবে| আকাশই আমার সেই চুক্তির প্রমাণ দেয়| এই চুক্তি বিশ্বাস য়োগ্য|” 38 কিন্তু ঈশ্বর, আপনার মনোনীত রাজার প্রতি আপনি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, এবং আপনি তাকে বরাবরই ত্যাগ করেছেন| 39 আপনার চুক্তি আপনি বাতিল করে দিয়েছেন| আপনি রাজার মুকুটকে ধূলোয় নিক্ষেপ করেছেন| 40 রাজার নগরীর প্রাচীর আপনি মাটিতে ফেলে দিয়েছেন| তার সব দুর্গকে আপনি ধ্বংস করেছেন| 41 পথচারী মানুষ তার জিনিস চুরি করে নিয়ে যায়| তার প্রতিবেশীরা তাকে বিদ্রূপ করে| 42 রাজার সব শত্রুকে আপনি খুশী করেছেন| তার শত্রুদের আপনি যুদ্ধে জয়ী হতে দিয়েছেন| 43 ঈশ্বর, আপনি ওদের নিজেদের রক্ষা করতে সাহায্য করেছেন| আপনার রাজাকে আপনি যুদ্ধে জয় করতে সাহায্য করেন নি| 44 আপনি তাকে জয়ী হতে দেন নি| তার সিংহাসনকে আপনি ভূ-লুন্ঠিত করেছেন| 45 তার য়ৌবনেই আপনি তার জীবনকে ছোট করে দিয়েছেন| তাকে আপনি লজ্জা দিয়েছেন| 46 প্রভু, আর কতদিন ওই সব চলবে? আপনি কি চিরদিন আমাদের উপেক্ষা করবেন? আপনার ক্রোধ কি চিরদিনই আগুনের মত জ্বলতে থাকবে? 47 স্মরণ করে দেখুন আমার জীবন কত নীতিদীর্ঘ| আপনি আমাদের সকলকেই সামান্য সময়ের জন্য সৃষ্টি করেছেন, এরপর আমরা মারা যাবো| 48 কেউ চিরদিন বাঁচবে না, এবং এমন কেউই নেই য়ে মরবে না| কোন ব্যক্তিই কবর থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না| 49 হে ঈশ্বর, সেই প্রেম কোথায যা অতীতে আপনি প্রদর্শন করেছিলেন? আপনি দায়ূদকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে, তার পরিবারের প্রতি আপনি বিশ্বাসভাজন থাকবেন| 50 হে প্রভু, স্মরণে রাখবেন, কেমন করে লোকরা আপনার দাসকে অপমান করেছিলো| প্রভু, আপনার শত্রুদের কাছ থেকে সেই সব অপমান আমায় শুনতে হয়েছে| ওই লোকরা আপনার মনোনীত রাজাকে অপমান করেছে| 51 52 ধন্য প্রভু চিরকালের জন্য! আমেন! আমেন!
1 হে প্রভু, আমাদের সমস্ত প্রজন্মের জন্য আপনি আমাদের গৃহ ছিলেন| 2 হে ঈশ্বর, পর্বতমালার জন্মের আগে, এই পৃথিবীর এবং জগত্ সৃষ্টির আগে, আপনিই ঈশ্বর ছিলেন| হে ঈশ্বর, আপনি চিরদিন ছিলেন এবং আপনি চিরদিন থাকবেন| 3 এই পৃথিবীতে আপনিই মানুষকে এনেছেন| আপনি পুনরায তাদের ধূলোয় পরিণত করেন| 4 আপনার কাছে হাজার বছর গতকালের মত, য়েন গত রাত্রি| 5 আপনি আমাদের ঝেটিযে বিদায করে দেন| আমাদের জীবন একটা স্বপ্নের মত, সকাল হলেই আমরা চলে যাই| আমরা ঘাসের মত| 6 সকালে ঘাসগুলো জন্মায় এবং বিকেলে তা শুকিয়ে মরে যায়| 7 ঈশ্বর, আপনার ক্রোধ আমাদের ধ্বংস করে দিতে পারে এবং তা আমাদের ভীত করে! 8 আমাদের সব পাপ আপনি জানেন| ঈশ্বর, আমাদের প্রত্যেকটি গোপন পাপ আপনি দেখতে পান| 9 আপনার ক্রোধ আমাদের জীবন শেষ করে দিতে পারে| ফিস্ফিসানি কথার মত আমাদের জীবন শেষ হয়ে যায়| 10 আমরা হয়তো বা 70 বছর বেঁচে থাকি| যদি আমরা শক্তিশালী হই তাহলে হয়তো 80 বছর বেঁচে থাকতে পারি| আমাদের জীবন কঠোর পরিশ্রম এবং যন্ত্রণায় ভরা| তারপর হঠাত্ আমাদের জীবন শেষ হয়ে যায়! আমরা উড়ে চলে যাই| 11 হে ঈশ্বর, আপনার ক্রোধের পূর্ণ শক্তি কতখানি তা কোন ব্যক্তিই জানে না| কিন্তু ঈশ্বর, আপনার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভয় আপনার ক্রোধের মতই বিরাট| 12 আমাদের জীবন প্রকৃতপক্ষে য়ে কত ছোট তা আমাদের দেখান| যাতে আমরা প্রকৃত জ্ঞান লাভ করতে পারি| 13 প্রভু সব সময় আমাদের মধ্যে ফিরে আসুন| আপনার দাসদের প্রতি সদয় হোন| 14 প্রত্যেক প্রভাতে আপনার প্রেমে আমাদের ভরিয়ে দিন| আমাদের সুখী হতে দিন, এ জীবনকে উপভোগ করতে দিন| 15 আমাদের জীবনে অনেক দুঃখ ও সমস্যা দিয়েছেন| এবার আমাদের সুখী করুন| 16 য়ে সব অলৌকিক কাজ আপনি আপনার সেবকদের জন্য করেন, তা ওরা দেখুক| ওদের সন্তানদের আপনার মহিমা দেখতে দিন| 17 ঈশ্বর আমাদের শ্রমে সাহায্য করুন| আমাদের শ্রম তাঁকে সাহায্য করুক|
1 গুপ্ত আশ্রয় লাভের জন্য তুমি পরাত্পরের কাছে য়েতে পারো| সুরক্ষার জন্য তুমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে য়েতে পারো| 2 আমি প্রভুকে বলেছি, “আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল, আপনিই আমার দুর্গ| হে আমার ঈশ্বর, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি|” 3 ভয়ঙ্কর ব্যাধি এবং গুপ্ত বিপদ থেকে ঈশ্বর তোমায় রক্ষা করবেন| 4 নিরাপত্তার জন্য তুমি ঈশ্বরের কাছে য়েতে পারো| য়েমন করে পাখি তার ডানা মেলে তার শাবকদের আগলে রাখে, তেমন করে, ঈশ্বর তোমায় রক্ষা করবেন| তোমায় রক্ষা করার জন্য ঈশ্বর হবেন একটি ঢাল ও প্রাচীরের মত| 5 রাতে তোমার ভয় পাওয়ার মতো কিছু থাকবে না| দিনের বেলাতেও শত্রুর তীরকে তুমি ভয় পাবে না| 6 নিশাকালে য়ে অসুখ আসে তাকে তুমি ভয় পাবে না, কিংবা দিনের বেলায় য়ে ভয়ঙ্কর অসুস্থতা আসে তাকেও তুমি ভয় পাবে না| 7 তুমি 1,000 হাজার শত্রুকে পরাজিত করতে পারবে| তোমার নিজের ডান হাত 10,000 শত্রু সৈন্যকে পরাজিত করবে| শত্রুরা তোমায় স্পর্শ পর্য়ন্ত করতে পারবে না! 8 লক্ষ্য করে দেখ, দেখবে য়ে ওই দুষ্ট লোকদের শাস্তি হয়েছে! 9 কেন? কারণ তুমি ঈশ্বরে আস্থা রাখ| কারণ পরাত্পরকে তুমি তোমার নিরাপদ আশ্রয়স্থলরূপে গ্রহণ করেছ| 10 তোমার কোন অমঙ্গল হবে না| তোমার বাড়ীতে কোন অসুখ থাকবে না| 11 ঈশ্বর তাঁর দূতদের আজ্ঞা দেবেন এবং তুমি যেখানেই যাবে তারা তোমায় রক্ষা করবে| 12 তোমার পা যাতে পাথরে হোঁচট না খায়, সেই জন্য ওদের হাত তোমায় ধরে থাকবে| 13 বিষধর সাপ, এমন কি সিংহের মধ্যে দিয়েও তুমি হেঁটে য়েতে পারবে| 14 প্রভু বলেন, “যদি কোন ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে এবং বিশ্বাস করে, আমি তাকে রক্ষা করবো| আমার অনুগামীরা যারা আমার নাম উপাসনা করে, তাদের আমি রক্ষা করবো| 15 আমার অনুগামীরা সাহায্যের জন্য আমায় ডাকবে এবং আমি তাদের সাড়া দেবো| যখন তারা সমস্যায় পড়বে তখন আমি ওদের সঙ্গে থাকবো| আমি ওদের রক্ষা করবো এবং সম্মান দেবো| 16 আমার অনুগামীদের আমি দীর্ঘ জীবন দেবো| আমি ওদের রক্ষা করবো|
1 প্রভুর প্রশংসা করাই ভাল| হে পরাত্পর, আপনার নামের প্রশংসা করাই ভাল| 2 প্রাতঃকালে আপনার প্রেমের গান এবং নিশাকালে আপনার বিশ্বস্ততার গান গাওয়াই ভালো| 3 ঈশ্বর, দশ তারা য়ন্ত্রে এবং বীণায আপনার জন্য সুর বাজানো ভাল| 4 প্রভু, য়ে সব জিনিস আপনি করেছেন তা দিয়ে আমাদের প্রকৃতই সুখী করেছেন| আমরা প্রফুল্লচিত্তে ওই সব বিষযের গুণগান করি| 5 প্রভু, আপনি সেই সব মহত্ কাজ করেছেন| আপনার চিন্তা বুঝে ওঠা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন| 6 আপনার তুলনায় মানুষ এক্কেবারে নির্বোধ প্রাণী| আমরা সেই বোকাদের মত যারা কিছুই বুঝতে পারে না| 7 দুষ্ট লোকরা আগাছার মত বেঁচে থেকে এবং মরে| য়ে অর্থহীন কাজ তারা করে যায়, তা চিরদিনের জন্য ধ্বংস হবে| 8 কিন্তু প্রভু, আপনি চিরদিনের জন্য সম্মানিত থাকবেন| 9 প্রভু, আপনার সব শত্রু ধ্বংস হবে| সেই সব লোক যারা মন্দ কাজ করে, তারা ধ্বংস হবে| 10 একটা গণ্ডার য়েমন তার বিশাল খড়গ দিয়ে আক্রমণ করে, আমিও সেই ভাবে, যারা আমার বিরোধিতা করে, সেইসব দুষ্ট লোকদের আক্রমণ করব| বিশেষ কাজের জন্য আপনি আমায় মনোনীত করেছেন এবং গন্ধ তেল মাথায় ঢেলে আমায় অভিষিক্ত করেছেন| 11 চারপাশে আমি শত্রুদের দেখতে পাচ্ছি| বিরাট বলদের মত ওরা আমায় আক্রমণের জন্য তৈরী হয়ে রয়েছে| আমি শুনছি ওরা আমার সম্পর্কে কি বলছে| 12 ধার্ম্মিক লোকরা প্রভুর মন্দিরে পোঁতা লিবানোনের এরস গাছের মত| ধার্ম্মিক লোকরা ঈশ্বরের মন্দিরে অঙ্গনের কুসুমিত তাল গাছের মত| 13 14 তাদের বৃদ্ধ বযসেও, তারা স্বাস্থ্য়বান তরুণ গাছের মতই ফল ধারণ করে| 15 প্রভু য়ে ভাল এটা দেখানোর জন্যই ওরা ওখানে আছে| তিনিই আমার শিলা এবং তিনি কোন ভুল করেন না|
1 প্রভুই রাজা| তিনি রাজকীয এবং শক্তিমান পোশাকে সজ্জিত| তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে এই বিশ্বকে তার আপন জায়গায় স্থাপন করেছেন এবং এটাকে নাড়ানো হবে না| 2 হে ঈশ্বর, আপনার রাজত্ব চিরদিন ধরে রয়েছে| ঈশ্বর আপনার অস্তিত্ব অনাদিকাল থেকে রয়েছে| 3 প্রভু, নদীর গর্জন প্রচণ্ড তীব্র| উচ্চকিত ঢেউ প্রচণ্ড গর্জনশীল| 4 সমুদ্রের উচ্চকিত ঢেউ প্রচণ্ড তীব্র ও গর্জনশীল| কিন্তু উর্দ্ধে অবস্থিত প্রভু তার থেকেও বেশী শক্তিশালী| 5 প্রভু আপনার বিধি চিরদিন বজায় থাকবে| আপনার পবিত্র মন্দিরের অস্তিত্ব দীর্ঘকালের জন্য বজায় থাকবে| আপনার পবিত্র মন্দিরের অস্তিত্ব দীর্ঘকালের জন্য বজায় থাকবে|
1 প্রভু, আপনিই সেই ঈশ্বর যিনি আসেন এবং লোকেদের শাস্তি দেন| আপনি সেই ঈশ্বর যিনি মানুষের জন্য শাস্তি নিয়ে আসেন| 2 আপনিই সারা পৃথিবীর বিচারক| উদ্ধত লোকদের য়ে শাস্তি প্রাপ্য তা আপনি ওদের দিন| 3 প্রভু, দুষ্ট লোকরা আর কতকাল ধরে উল্লাস করবে? আরও কতদিন প্রভু? 4 আরও কতদিন ধরে ওই দুষ্কৃতকারীরা তাদের দুষ্কৃতির বড়াই করে যাবে? 5 প্রভু, ওরা আপনার লোকদের আঘাত করে| ওরা আপনার লোকদের কষ্ট দিয়েছে| 6 আমাদের দেশে য়ে সব বিধবা ও বিদেশী থাকে, ওই দুর্জনরা তাদের হত্যা করে| অনাথদেরও ওরা খুন করে| 7 ওরা বলে, ওরা য়ে সব মন্দ কাজ করে প্রভু তা দেখেন না! ওরা বলে কি ঘটেছে ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাও জানে না| 8 তোমরা নিষ্ঠুর লোকরা সত্যই নির্বোধ মানুষ! আর কবে তোমরা শিক্ষা লাভ করবে? তোমরা মন্দ লোকরা সত্যি অপগণ্ড! তোমরা অবশ্যই বোঝবার চেষ্টা কর| 9 ঈশ্বর আমাদের কান সৃষ্টি করেছেন, তাই নিশ্চয়ই তাঁরও কান রয়েছে এবং তিনি শুনতেও পান কি ঘটছে! ঈশ্বর আমাদের চোখ দিয়েছেন, তাই নিশ্চিতভাবে কি ঘটছে তা তিনি দেখতে পান! 10 ঈশ্বর ওই লোকদের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা আনবেন| ওই লোকেরা কি করবে তা ঈশ্বরই ওদের শেখাবেন| 11 মানুষ কি ভাবছে তাও ঈশ্বর জানেন| ঈশ্বর জানেন য়ে মানুষ বাতাসের একটি ফুত্কারের মত| 12 প্রভু য়ে লোককে নিয়মানুবর্তী করেন সে সত্যই সুখী হবে| ঈশ্বর তাকে বেঁচে থাকার প্রকৃত পথ কি তা দেখাবেন| 13 ঈশ্বর, সংকটের সময় য়ে লোক শান্ত থাকে তাকেই আপনি সাহায্য করবেন| মন্দ লোকেদের য়তক্ষণ পর্য়ন্ত না কবরে পাঠানো হয় ততক্ষণ পর্য়ন্ত আপনি তাকে শান্ত থাকতে সাহায্য করবেন| 14 প্রভু তাঁর লোকদের ত্যাগ করবেন না| সাহায্য না করে তিনি ওদের ত্যাগ করবেন না| 15 ন্যায্য বিচার ফিরে আসবে এবং ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে আসবে| তারপর সত্ এবং ভাল লোকরা অবশ্যই থাকবে| 16 মন্দ লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কেউই আমায় সাহায্য করে নি| যারা মন্দ কাজ করে, তাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য কোন লোক আমার পাশে দাঁড়ায নি| 17 যদি প্রভু আমায় সাহায্য না করতেন আমি এতদিনে কবরের গর্ভে নীরব হয়ে য়েতাম| 18 আমি জানি আমি পতনোন্মুখ ছিলাম, কিন্তু প্রভু তাঁর অনুগামীদের সাহায্য করেছেন| 19 আমি প্রচণ্ড চিন্তিত ও বিমর্ষ ছিলাম| কিন্তু প্রভু, আপনি আমায় সান্ত্বনা দিয়ে আমায় সুখী করেছেন! 20 ঈশ্বর আপনি ক্রুর বিচারকদের সাহায্য করবেন না| তাই মন্দ বিচারকরা মানুষের জীবনকে আরও কঠিনতর করার জন্য নিয়ম ব্যবহার করে| 21 ওই বিচারকরা ধার্ম্মিক লোকদের আক্রমণ করে| ওরা নিরপরাধ লোকদের দোষী বলে বিচার করে এবং ওদের হত্যা করে| 22 কিন্তু পর্বতগুলির সু-উচ্চে প্রভুই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| ঈশ্বর আমার শিলা, আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| 23 মন্দ কাজ করার জন্য ঈশ্বর ওই দুষ্ট বিচারকদের শাস্তি দেবেন| পাপ করেছে বলে ঈশ্বর ওদের ধ্বংস করবেন| প্রভু আমাদের ঈশ্বর, ওই দুষ্ট বিচারকদের ধ্বংস করবেন|
1 এস, আমরা প্রভুর প্রশংসা করি! য়ে শিলা আমাদের রক্ষা করেন তাঁর উদ্দেশ্যে আমরা উচ্চস্বরে প্রশংসাধ্বনি দিই| 2 আমরা প্রভুর উদ্দেশ্যে ধন্যবাদের গান গাই| তাঁর প্রশংসায় আমরা আনন্দগান গাই| 3 কেন? কারণ প্রভুই মহান ঈশ্বর! তিনিই সেই মহান রাজা যিনি সকল “দেবতাদের” শাসন করছেন| 4 গভীরতম গুহা, উচ্চতম পর্বত, সবই প্রভুর| 5 সমুদ্রও তাঁরই -তিনিই তা সৃষ্টি করেছেন| ঈশ্বর তাঁর নিজের হাতে এই শুকনো জমি সৃষ্টি করেছেন| 6 এস, আমরা অবনত হয়ে তাঁর উপাসনা করি! য়ে প্রভু আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রশংসা করি! 7 কেন? কারণ যদি আমরা তাঁর কন্ঠ শুনি তাহলে তিনি আমাদের ঈশ্বর হবেন এবং আমরা হব সেই লোকেরা যাদের তিনি খাদ্য য়োগান, আমরা হব সেই মেষ যাদের তিনি স্বহস্তে নেতৃত্ব দেন| 8 ঈশ্বর বলেন, “মরীবাতে তোমরা য়েমন অবাধ্য হয়েছিলে, মঃসার মরুপ্রান্তরে য়েমন হয়েছিল, তেমন হযো না| 9 তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমায় পরীক্ষা করেছে| ওরা আমাকে পরীক্ষা করেছিলো কিন্তু এই সময় ওরা দেখেছিলো আমি কি করতে পারি! 10 40 বছর ধরে আমি ওদের প্রতি ধৈর্য়্য় ধারণ করেছি| আমি জানি য়ে ওরা বিশ্বাসী নয়| ওরা আমার শিক্ষামালা অনুসরণ করতে অগ্রাহ্য করেছে| 11 তাই ওদের প্রতি আমি ক্রুদ্ধ হয়েছিলাম এবং আমি কথা দিয়েছিলাম য়ে, ওরা আমার বিশ্রামের স্থানে কখনো প্রবেশ করতে পারবে না|
1 প্রভু যা কিছু নতুন করেছেন তার জন্য একটা নতুন গান গাও! সারা পৃথিবীকে প্রভুর উদ্দেশ্যে গেয়ে উঠতে দাও| 2 প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও! তাঁর নামকে ধন্য কর! আনন্দ সংবাদ ছড়িয়ে দাও! যিনি প্রতিদিন আমাদের রক্ষা করেন তাঁর কথা বল! 3 লোকেদের বল য়ে ঈশ্বর সত্যিই বিস্ময়কর| ঈশ্বর য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন তা সর্বত্র মানুষকে বল| 4 প্রভু মহান এবং প্রশংসার য়োগ্য| অন্য য়ে কোন “দেবতার” চেয়ে তিনি অনেক বেশী ভয়ঙ্কর| 5 অন্যান্য সমস্ত জাতির “দেবতা” মূর্ত্তিমাত্র| কিন্তু প্রভু স্বর্গ সৃষ্টি করেছেন| 6 তাঁর সামনে অনুপম মহিমা ভাস্বর হয়ে ওঠে| ঈশ্বরের পবিত্র মন্দিরে শক্তি ও সৌন্দর্য়্য় দুই-ই আছে| 7 হে পরিবার ও জাতিগণ, প্রশংসার গান কর এবং প্রভুকে মহিমান্বিত কর| 8 প্রভুর নামের প্রশংসা কর| তোমাদের নৈবেদ্য নাও এবং মন্দিরে যাও| 9 তোমাদের পবিত্র পোশাকে প্রভুর সামনে নত হও| পৃথিবীর সমগ্র জনগণ, তাঁর উপস্থিতিতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাও| 10 জাতিগণের মধ্যে ঘোষণা করে দাও য়ে প্রভু রাজা! তাহলে বিশ্ব ধ্বংস হবে না| অতএব প্রভু ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে লোকদের বিচার করেন| 11 হে স্বর্গলোক - সুখী হও! হে পৃথিবী - উল্লসিত হও! সমুদ্র এবং সমুদ্রে যা কিছু রয়েছে তোমরা সবাই আনন্দে চিত্কার করে ওঠো! 12 ক্ষেতগুলি এবং সেখানে যা কিছু জন্মেছে, সুখী হও! হে অরণ্যের বৃক্ষরাশি, তোমরা গান গাও ও সুখী হও! 13 খুশী হও, কারণ প্রভু আসছেন. পৃথিবীকে শাসনকরার জন্য প্রভু আসছেন| ন্যায় বিচার ও সত্যপথে তিনি পৃথিবীকে শাসন করবেন|
1 প্রভু শাসন করেন, তাই পৃথিবী সুখী| দূরদূরান্তের ভূখণ্ডও সুখী| 2 ঘন কালো মেঘ প্রভুকে ঘিরে রয়েছে| সুবিচার এবং ধার্ম্মিকতা তাঁর রাজ্যকে দৃঢ় করে| 3 একটা আগুন প্রভুর আগে আগে যায় এবং তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করে| 4 তাঁর বিদ্য়ুত্ আকাশে ঝলক দিয়ে ওঠে| তা দেখে লোকে ভয় পায়| 5 পর্বতও প্রভুর সামনে মোমের মত গলে যায়| সমগ্র পৃথিবীর প্রভুর সামনে তারা গলে যায়! 6 আকাশ তাঁর ধার্ম্মিকতার কথা বলে! প্রত্যেকে তাঁর মহিমা দেখুক! 7 লোকরা তাদের মূর্ত্তিকে পূজা করে| ওরা ওদের “দেবতার” বড়াই করে| কিন্তু ওই লোকগুলো লজ্জিত হবে| ওদের “দেবতারাই” মাথা নত করে প্রভুর উপাসনা করবে| 8 সিয়োন, শোন এবং সুখী হও! যিহূদার শহরসমূহ, সুখী হও! কেন? কারণ ঈশ্বর যথায়থ সিদ্ধান্ত নেন| 9 হে পরাত্পর প্রভু, প্রকৃতই আপনি পৃথিবীর শাসনকর্তা| “দেবতাদের” চেয়ে আপনি অনেক ভালো| 10 যারা প্রভুকে ভালোবাসে তারা মন্দকে ঘৃণা করবে| তাই ঈশ্বর তাঁর অনুগামীদের রক্ষা করেন| ঈশ্বর তাঁর অনুগামীদের মন্দ লোকদের হাত থেকে রক্ষা করেন| 11 ধার্ম্মিক লোকদের ওপর আলো ও সুখ উদ্ভাসিত হয়| 12 হে ধার্ম্মিক লোকরা, প্রভুতে সুখী হও! তাঁর পবিত্র নামের সম্মান কর!
1 প্রভুর উদ্দেশ্যে একটা নতুন গান গাও, কারণ তিনি নতুন নতুন আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেছেন! 2 তাঁর পবিত্র ডান বাহু আবার তাঁকে বিজয় এনে দিয়েছে| 3 প্রভু জাতিগুলোর নিকট তাঁর উদ্ধার করার শক্তি প্রকাশ করেছেন| প্রভু তাদের তাঁর ন্যায়পরায়ণতা প্রদর্শন করেছেন| 4 ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি প্রভুর বিশ্বস্ততা তাঁর অনুগামীরা স্মরণ করে| দূরদূরান্তের দেশও আমাদের ঈশ্বরের ত্রাণশক্তি দেখেছে| 5 পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ, প্রভুর উদ্দেশ্যে আনন্দধ্বনি দাও| শীঘ্রই প্রশংসা গীত শুরু কর! 6 হে বীণা, প্রভুর প্রশংসা কর| বীণার সুর প্রভুর প্রশংসা কর| 7 ভেঁপু ও বাঁশি বাজাও এবং আমাদের রাজা প্রভুর উদ্দেশ্যে আনন্দ ধ্বনি দাও! 8 সমুদ্র এবং পৃথিবী এবং যেখানে যা কিছু আছে সবাই য়েন উচ্চস্বরে গেয়ে ওঠে| 9 হে নদীসমূহ, তোমরা হাততালি দাও! হ পর্বতরাজি, তোমরা একসঙ্গে গেয়ে ওঠো!প্রভুর সামনে গান গাও কেননা তিনি বিশ্বকে শাসন করতে আসছেন| তিনি ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে এই বিশ্বকে শাসন করবেন| তিনি সততার সঙ্গে লোকদের শাসন করবেন| 10
1 প্রভুই রাজা| তাই জাতিগুলোকে ভয়ে কাঁপতে দাও| করূব দূতদের ওপরে ঈশ্বর একজন রাজার মত বসেন| তাই পৃথিবীকে ভয়ে কেঁপে উঠতে দাও| 2 সিয়োনে প্রভু মহান! সমগ্র জাতির ওপরে তিনি একজন মহান নেতা| 3 সমস্ত লোক আপনার প্রশংসা করুক| ঈশ্বরের নাম ভীতিপ্রদ| ঈশ্বরই পবিত্র| 4 শক্তিশালী রাজা, ন্যায় বিচার পছন্দ করে| ঈশ্বর, আপনিই ধার্ম্মিকতা সৃষ্টি করেছেন| আপনিই যাকোবকে ধার্ম্মিকতা এবং ন্যায়নীতি দিয়েছিলেন| 5 আমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর এবং তাঁর পবিত্র পাদপীঠেউপাসনা কর| 6 মোশি ও হারোণ তাঁর বহু যাজকদের মধ্যে দু’জন এবং শমূযেলও তাঁর নাম উচ্চারণকারীদের একজন| ওরা প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলো এবং প্রভু ওদের উত্তর দিয়েছেন| 7 দীর্ঘ মেঘের ভেতর থেকে ঈশ্বর কথা বলেছেন| ওরাও তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করেছিল| ঈশ্বর ওদের বিধি প্রদান করেছিলেন| 8 প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, আপনি ওদের প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন| আপনি ওদের দেখিয়েছেন য়ে আপনিই ক্ষমাশীল ঈশ্বর এবং মানুষ মন্দ কাজ করে বলে আপনি মানুষকে শাস্তি দেন| 9 আমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর| তাঁর পবিত্র পর্বতের দিকে মাথা নত করে এবং তাঁর উপাসনা কর| প্রভু আমাদের ঈশ্বর, সত্যিই পবিত্র!
1 হে পৃথিবী, প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও! 2 যখন তুমি প্রভুর সেবা কর তখন আনন্দিত থেকো! আনন্দ গীত গাইতে গাইতে প্রভুর সামনে এসো! 3 এটা জেনো য়ে প্রভুই ঈশ্বর| তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন| আমরা তাঁরই মেষের পাল| 4 ধন্যবাদের গীত গাইতে গাইতে তাঁর শহরে এসো| প্রশংসা গীত গাইতে গাইতে তাঁর মন্দিরে এসো| তাঁকে সম্মান কর, তাঁর নামকে ধন্য কর| 5 প্রভু ভালো! তাঁর ভালোবাসা চিরন্তন| আমরা সর্বদাই তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারি!
1 আমি প্রেম এবং ন্যাযের গান গাইবো| প্রভু, আমি আপনার উদ্দেশ্যে গান গাইবো| 2 আমি একজন বিচক্ষণ লোকের মত শুদ্ধ হৃদয় নিয়ে একটি শুদ্ধ জীবনযাপন করব| আপনি আমার গৃহের একান্ত অভ্য়ন্তরভাগে কখন আসবেন? 3 আমার সামনে কোন মূর্ত্তি আমি রাখবো না| ওরকম ভাবে যারা আপনার বিরুদ্ধে যায় তাদের আমি ঘৃণা করি| আমি তা করবো না! 4 আমি সত্ থাকবো| আমি কোন মন্দ কাজ করবো না| 5 যদি কেউ গোপনে তার প্রতিবেশী সম্পর্কে মন্দ কথা বলে, আমি তাকে চুপ করিয়ে দেবো| আমি লোকেদের কখনই উদ্ধত হতে দেবো না এবং তাদের ভাবতে দেবো না য়ে তারা অন্যান্যদের চেয়ে ভালো| 6 আমি সমস্ত দেশের মধ্যে সেই সব লোকেদের খুঁজবো যাদের ওপর নির্ভর করা যায়| এবং একমাত্র তাদেরই আমার সেবা করতে দেবো| যারা পবিত্র জীবনযাপন করে একমাত্র তারাই আমার সেবক হবে| 7 আমি মিথ্যেবাদীদের আমার গৃহের গোপন অভ্য়ন্তরভাগে বাস করতে দেব না| 8 এই দেশে য়ে সব মন্দ লোক বাস করে, সব সময়েই আমি তাদের ধ্বংস করবো| মন্দ লোকদের আমি প্রভুর শহর ছেড়ে য়েতে বাধ্য করবো|
1 যন্ত্রণা কাতর একটি মানুষের প্রার্থনা| সে যখন দুর্বল বোধ করে ও প্রভুকে তার অভিয়োগ জানাতে চায় তখনকার প্রার্থনা| প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন| সাহায্যের জন্য আমার ক্রন্দন শুনুন| 2 যখন আমি সমস্যার মধ্যে থাকি তখন আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না| আমার কথা শুনুন| যখন আমি সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করি তখন আমায় উত্তর দিন| 3 ধোঁযার মত আমার জীবন কেটে যাচ্ছে| আমার জীবন একটি আগুনের মত যা ধীরে ধীরে পুড়ে যাচ্ছে| 4 আমার শক্তি চলে গেছে| আমি শুকনো মৃত প্রায় ঘাসের মত| আমি আমার খাবার পর্য়ন্ত খেতে ভুলে গেছি| 5 দুঃখের কারণে আমার ওজন কমে যাচ্ছে| 6 আমি একটি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাস করা পেঁচার মত নিঃসঙ্গ| ধ্বংসাবশিষ্ট অট্টালিকায আমি একা পেঁচার মত বাস করছি| 7 আমি ঘুমোতে পারি না| আমি ছাদে বাস করা এক নিঃসঙ্গ পাখির মত| 8 শত্রুরা সব সময়ে আমাকে অপমান করে| ওরা আমাকে নিয়ে মজা করে ও ভর্ত্সনা করে| 9 আমার খাদ্যই এখন আমার বিরাট দুঃখ| আমার চোখের জল আমার পানীয়তে পড়ছে| 10 কেন? কারণ প্রভু আপনি আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন| আপনিই আমাকে তুলে ধরেছেন এবং তারপর আপনিই আমায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন| 11 দিনের শেষের দীর্ঘ ছায়াগুলির মত আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে গেছে| আমি শুকনো এবং মৃত প্রায় ঘাসের মত| 12 কিন্তু প্রভু, আপনি চিরদিনই বিরাজিত থাকবেন| আপনার নাম চিরকাল এবং অনন্তকাল মনে রাখা হবে| 13 আপনাকে উত্থান করতে হবে এবং আপনি সিয়োনকে স্বস্তি দেবেন| কারণ তাকে সান্ত্বনা দেবার সময় হয়েছে| 14 আপনার দাসগণ সিয়োনের পাথরগুলিকে ভালোবাসে| এই শহরের ধূলোকে পর্য়ন্ত তারা ভালোবাসে| 15 লোকরা প্রভুর নামের উপাসনা করবে| হে ঈশ্বর, পৃথিবীর সমস্ত রাজারা আপনাকে মহিমান্বিত করবে| 16 প্রভু সিয়োনকে আবার নির্মাণ করবেন| লোকেরা আবার তাঁর মহিমা দেখবে| 17 য়ে সব লোককে ঈশ্বর বাঁচিয়ে রেখেছেন, তিনি আবার তাদের প্রার্থনার উত্তর দেবেন| ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা শুনবেন| 18 ভবিষ্যত্ প্রজন্মের জন্য এইসব লিখে রাখো এবং ভবিষ্যতে ওরা প্রভুর প্রশংসা করবে| 19 প্রভু, তাঁর পবিত্র স্থান থেকে নীচের দিকে চেয়ে দেখবেন| স্বর্গ থেকে প্রভু পৃথিবীর দিকে চেয়ে দেখবেন| 20 তিনি বন্দীদের প্রার্থনা শুনবেন| যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাদের তিনি মুক্ত করবেন| 21 তারপর সিয়োনে লোকরা প্রভুর কথা বলবে| জেরুশালেমে তারা প্রভুর নামের প্রশংসা করবে| 22 সব জাতিসমূহ একসঙ্গে জড় হবে| প্রভুর সেবার জন্য সব রাজ্য ছুটে আসবে| 23 আমার শক্তি কমে এসেছে| আমার জীবনও ছোট হয়ে এসেছে| 24 তাই আমি বলেছিলাম, “আমি য়তক্ষণ যুবক আছি আমাকে মরতে দেবেন না| ঈশ্বর আপনি চিরদিন বিরাজিত থাকবেন! 25 সুদূর অতীতে আপনি এই বিশ্বসৃষ্টি করেছিলেন| নিজের হাতে আপনি আকাশ সৃষ্টি করেছিলেন! 26 এই বিশ্ব, এই আকাশ একদিন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আপনি চির বিরাজমান থাকবেন! ওদের বস্ত্রের মতই পরিধান করা হবে| এবং জামাকাপড়ের মতই আপনি ওদের বদল করবেন| ওরা সবাই পরিবর্তিত হবে| 27 কিন্তু ঈশ্বর, আপনি পরিবর্তিত হবেন না| আপনি চিরদিন বিরাজ করবেন! 28 আজ আমরা আপনার দাস| আমাদের সন্তানরাও এখানে বসবাস করবে| এমনকি তাদের উত্তরপুরুষরাও আপনার উপাসনা করার জন্য এখানেই বসবাস করবে|
1 হে আমার আত্মা, প্রভুকে ধন্যবাদ দাও! আমার প্রত্যেকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, তাঁর পবিত্র নামের প্রশংসা কর! 2 হে আমার আত্মা, প্রভুর প্রশংসা কর! ভুলে য়েও না য়ে তিনি সত্যিই দয়ালু| 3 ঈশ্বর আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করেন| তিনি আমাদের সকল রোগ থেকে সারিযে তোলেন| 4 ঈশ্বর আমাদের জীবনকে কবর থেকে রক্ষা করেন| তিনি আমাদের প্রেম ও সহানুভূতি দেন| 5 তিনি আমাদের রাশি রাশি ভালো জিনিস দেন| তিনিই সেইজন যিনি পুরানো পালক ঘসে নতুন পালক গজানো একটি ঈগলের মত তোমাদের য়ৌবন পুনরুজীবিত করেন| 6 প্রভুই সত্| প্রভু অবদমিত লোকদের কাছে ন্যায় বিচার ও নিরপেক্ষতা আনেন| 7 ঈশ্বর মোশিকে তাঁর শিক্ষামালা দিয়েছিলেন| য়ে সব ক্ষমতা সম্পন্ন কাজ ঈশ্বর করতে পারেন সে সব তিনি ইস্রায়েলকে দেখিয়েছিলেন| 8 প্রভু দয়ালু এবং ক্ষমতাশীল| ঈশ্বর ধৈর্য়্য়শীল এবং প্রেমে পূর্ণ| 9 প্রভু সব সময় আমাদের সমালোচনা করেন না| প্রভু সর্বদা আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ থাকেন না| 10 আমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছিলাম কিন্তু প্রাপ্য শাস্তি তিনি আমাদের দেন নি| 11 য়েমন করে পৃথিবীর ওপরে আকাশ বিস্তৃত হয়ে আছে, তেমনি ঈশ্বরের অনুগামীদের ওপরে ঈশ্বরের প্রেম পরিব্যপ্ত হয়ে আছে| 12 পূর্ব য়েমন পশ্চিমের থেকে বিচ্ছিন্ন, তেমন করেই ঈশ্বর, আমাদের কাছ থেকে আমাদের পাপকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে গেছেন| 13 পিতা য়েমন পুত্রের প্রতি দয়াময় তেমনি প্রভুও তাঁর অনুগামীদের প্রতি দয়ালু| 14 ঈশ্বর আমাদের সম্পর্কে সব কিছুই জানেন| ঈশ্বর জানেন য়ে আমরা ধূলো থেকে সৃষ্ট হয়েছি| 15 ঈশ্বর জানেন আমাদের জীবন ঘাসের মত অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত| 16 ঈশ্বর জানেন আমরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বুনো ফুলের মত| সেই সব ফুল খুব তাড়াতাড়ি জন্মায়| তারপর উত্তপ্ত বাতাস বইলেই সেই সব ফুল ঝরে পড়ে| আবার তুমি বলতেও পারবে না, সেই সব ফুল কোথায জন্মেছিল| 17 কিন্তু প্রভু তাঁর অনুগামীদের প্রতি সবসময়ই স্নেহশীল| তিনি চিরদিনই তাঁর অনুগামীদের ভালোবাসেন| ঈশ্বর তাঁর সন্তানদের প্রতি এবং সন্তানদের সন্তানের প্রতিও ভালো ব্যবহার করবেন| 18 যারা তাঁর চুক্তি অনুসরণ করে, তাদের প্রতি ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন| যারা তাঁর আজ্ঞা মেনে চলে তাদের প্রতিও ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন| 19 স্বর্গে ঈশ্বরের সিংহাসন রয়েছে এবং তিনিই সব কিছুর শাসন করছেন| 20 হে দূতগণ, প্রভুর প্রশংসা কর! তোমরা দূতেরা সেই শক্তিশালী সৈন্য যারা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করো| তোমরা ঈশ্বরের কথা শোন এবং তাঁর আজ্ঞা মান্য কর| 21 প্রভু এবং তাঁর সকল সৈন্যদের প্রশংসা কর| তোমরা তাঁর দাস| ঈশ্বর যা চান তোমরা তাই কর| 22 প্রভুর প্রশংসা কর| তাঁর রাজ্য়ের প্রতিটি জায়গায় তাঁর সব কাজগুলিকে প্রশংসা কর| হে আমার আত্মা, প্রভুর প্রশংসা কর!
1 হে আমার আত্মা প্রভুর প্রশংসা কর! হে প্রভু আমার ঈশ্বর, আপনি মহান! মহিমা এবং সম্মান সহ সজ্জিত| 2 য়েমন করে মানুষ জামাকাপড় পরে, তেমন করে আপনি আলোক পরিধান করেন| আপনিই আকাশকে পর্দার মত বিস্তৃত করেছেন| 3 ঈশ্বর তার ওপরে আপনি আপনার গৃহ নির্মাণ করেছেন| ঘন মেঘকে রথের মত ব্যবহার করে, বাতাসের ডানায ভর করে আপনি সারা আকাশে ঘুরে বেড়ান| 4 ঈশ্বর, আপনার দূতদের আপনি বাতাসের মত এবং আপনার দাসদের আগুনের মত করে সৃষ্টি করেছেন| 5 ঈশ্বর, পৃথিবীকে আপনি তার শক্ত ভিতের ওপর নির্মাণ করেছেন, তাই পৃথিবী কখনও পড়ে যাবে না| 6 কম্বলের মত আপনি তাকে জল দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন| জলরাশি পর্বতকে ঢেকে দিয়েছে| 7 কিন্তু আপনি নির্দেশ দিয়েছিলেন তাই জলও সরে গিয়েছিলো| ঈশ্বর আপনি জলের দিকে চেয়ে উচ্চস্বরে নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং জলরাশি সরে গিয়েছিলো| 8 সেই জলরাশি পর্বতসমূহ থেকে বয়ে গিয়ে পড়েছিলো উপত্যকার মধ্যে এবং তারপর তার জন্য য়ে নির্দিষ্ট জায়গা আপনি তৈরী করেছিলেন সেখানে ঝরে পড়েছিলো| 9 আপনিই সমুদ্রের সীমা নির্ধারণ করেছেন| অতএব, জলরাশি আর অত উঁচুতে উঠবে না যাতে পৃথিবী পুনরায ঢেকে য়েতে পারে| 10 ঈশ্বর, আপনিই প্রস্রবণের জলকে নদীর ধারায প্রবাহিত করিয়েছেন| পার্বত্য ধারা বেযে তা নীচে নেমে আসে| 11 সেই জলধারা সব বন্য প্রাণীদের পানীয় জল দেয়| এমন কি বুনো গাধারাও এখানে জল পান করতে আসে| 12 জলের ধারে বুনো পাখিরা বাস করতে আসে, কাছাকাছি গাছের ডালে বসে তারা গান গায| 13 ঈশ্বর, পর্বত বেযে বৃষ্টি পাঠান| য়ে সব জিনিস ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন সেগুলি পৃথিবীর যা কিছু প্রযোজন তার সবই জোগান দেয়| 14 পশুদের জন্য তিনি ঘাস দিয়েছেন| আমরা আমাদের কঠিন পরিশ্রম দিয়ে য়ে উদ্ভিদগুলি রোপন করি তাও তিনিই দেন| ওই সব গাছ মাটি থেকে আমাদের খাদ্য দেয়| 15 য়ে দ্রাক্ষারস আমাদের সুখী করে, য়ে তেল আমাদের চামড়া নরম রাখে, য়ে খাদ্য আমাদের শক্তিশালী করে সে সবই ঈশ্বর আমাদের দেন| 16 লিবানোনের মস্ত বড় এরস গাছগুলো ঈশ্বরের| প্রভুই ওই গাছগুলো লাগিয়েছেন এবং ওদের প্রযোজনীয জল তিনিই দিয়েছিলেন| 17 ওই গাছগুলোতে চড়ুই থেকে শুরু করে সারস পর্য়ন্ত সব পাখি বাসা করেছে| 18 উঁচু পর্বতে বুনো ছাগলরা থাকে| বিশাল বিশাল পাথরের মধ্যে পাহাড়ী ভোঁদড় লুকিয়ে থাকে| 19 হে ঈশ্বর, কবে ছুটি শুরু হবে তা বলে দেওয়ার জন্য আপনি আমাদের চাঁদ দিয়েছেন| এবং কখন অস্ত য়েতে হবে সূর্য় তা সব সময়েই জানে| 20 রাত্রি হবার জন্য আপনি অন্ধকার সৃষ্টি করেছেন, সেই সময় হিংস্র পশুরা বেরিয়ে আসে এবং ঘুরে বেড়ায| 21 আক্রমণের সময় সিংহ গর্জন করে ওঠে, ঈশ্বর য়ে খাদ্য তাদের দেন তা য়েন তারা গর্জন করে চাইতে থাকে| 22 তারপর সূর্য় ওঠে এবং পশুরা তাদের ঘরে গিয়ে বিশ্রাম করে| 23 তারপর লোকরা য়ে যার কাজে যায় এবং তারা সন্ধ্যা পর্য়ন্ত কাজ করে| 24 হে ঈশ্বর, আপনি অনেক বিস্ময়কর কাজ করেছেন| আপনার সৃষ্ট জিনিসে এই পৃথিবী পূর্ণ| আপনি যা কিছু করেন, তার মধ্যে আমরা আপনার প্রজ্ঞা দেখি| 25 সাগরের দিকে দেখ তা কত বড়! সাগরের মধ্যে কত রকম ছোট এবং বড় প্রাণীসমূহ আছে যা গোনা যায় না! 26 আপনার সৃষ্ট লিবিয়াথন যখন সমুদ্রে খেলা করে, তখন জাহাজসমূহ সমুদ্র পারাপার করে| 27 ঈশ্বর, ওই সব জিনিসই আপনার ওপর নির্ভর করে| যথাসময়ে আপনি ওদের খাদ্য দেন| 28 সব জীবন্ত প্রাণীকেই আপনি তাদের আহারের খাদ্য দেন| ভালো ভালো খাবারে ভর্ত্তি করে আপনি আপনার করয়ুগল উন্মুক্ত করেন এবং তারা সন্তুষ্ট না হওয়া পর্য়ন্ত আহার করে যায়| 29 কিন্তু যখন আপনি ওদের থেকে বিমুখ হন ওরা ভয় পেয়ে যায়| ওদের আত্মা ওদের ছেড়ে যায়, ওরা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মারা যায় এবং ওদের দেহ আবার ধূলোয় পরিণত হয়! 30 কিন্তু যখন আপনি আপনার আত্মাকে পাঠালেন, প্রভু, তখন ওরা আবার স্বাস্থ্য়বান হল| দেশটিকে আপনি আবার নতুন করে তোলেন! 31 প্রভুর মহিমা চিরদিন বিরাজ করুক! ঈশ্বর যা সৃষ্টি করেছেন তা তিনি উপভোগ করুন| 32 প্রভু যদি একবার পৃথিবীর দিকে তাকান পৃথিবী কেঁপে যাবে| পর্বতকে তিনি স্পর্শ করলে সেখান থেকে ধোঁযা বেরোতে থাকবে| 33 আমার সারা জীবন আমি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গান গাইব| য়তক্ষণ আমি বেঁচে থাকবো, আমি প্রভুর কাছে প্রশংসা গীত গাইব| 34 আমি যা বলেছি, তা য়েন ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে| প্রভুর সঙ্গ লাভ করে আমি খুশী| 35 পাপ য়েন পৃথিবী থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়| দুষ্ট লোকদের অস্তিত্ব য়েন আর না থাকে| হে আমার আত্মা, প্রভুর প্রশংসা কর! প্রভুর প্রশংসা কর!
1 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও| তাঁর নাম উপাসনা কর| তাঁর বিস্ময়কর কাজকর্ম সম্বন্ধে জাতিগণকে বল| 2 প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও| তাঁর প্রশংসা গান কর| তিনি য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন সে সম্পর্কে বল| 3 প্রভুর পবিত্র নামে গর্ববোধ কর| যারা প্রভুর খোঁজে এসেছে তারা য়েন সুখী হয়! 4 শক্তির জন্য তোমরা প্রভুর কাছে যাও| সর্বদাই তাঁর কাছে সাহায্যের জন্য যাও| 5 তিনি য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন তা স্মরণ কর| তিনি য়ে সমস্ত চমত্কার কাজ করেছেন এবং তাঁর বিচক্ষণ প্রজ্ঞা সিদ্ধান্তগুলি স্মরণে রেখো| 6 তোমরা তাঁর দাস অব্রাহামের উত্তরপুরুষ| তোমরা যাকোবের উত্তরপুরুষ যাকে ঈশ্বর বেছে নিয়েছিলেন| 7 প্রভুই আমাদের ঈশ্বর| প্রভু সারা বিশ্বকে শাসন করেন| 8 ঈশ্বর তাঁর চুক্তি চিরদিন স্মরণে রাখেন এবং 1,000 প্রজন্ম ধরে, য়ে আজ্ঞাগুলি তিনি দিয়েছেন তা স্মরণে রাখেন| 9 অব্রাহামের সঙ্গে ঈশ্বর একটা চুক্তি করেছিলেন| ইস্হাককে ঈশ্বর একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| 10 তারপর তিনি যাকোবের জন্য বিধিরূপে দিলেন| ইস্রায়েলের সঙ্গে ঈশ্বর চুক্তি করেছিলেন| এই চুক্তি চিরদিন ধরে চলবে! 11 ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমাদের কনানের ভূখণ্ড দেব| সেই দেশটি তোমাদের হবে|” 12 যখন অব্রাহামের পরিবার ছোট ছিল, তখন ঈশ্বর এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| সেই সময়, সেই দেশে তারা বিদেশী ছিল| 13 তারা এক জাতি থেকে অন্য জাতিতে, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্য়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো| 14 কিন্তু ঈশ্বর লোকদের ওদের সঙ্গে দুর্বব্যবহার করতে দেন নি| ঈশ্বর রাজাদের সাবধান করে দিয়েছিলেন য়ে ওদের কোন ক্ষতি করা চলবে না| 15 ঈশ্বর বলেছিলেন, “আমার মনোনীত লোকদের আঘাত করো না| আমার ভাববাদীদের প্রতি অন্যায় করো না|” 16 ঈশ্বর সেই দেশে এক দুর্ভিক্ষ ঘটালেন| লোকজন আহারের জন্য খাবার পেল না| 17 কিন্তু, ঈশ্বর য়োষেফ নামে একজনকে ওদের সামনে পাঠালেন| য়োষেফকে একজন ক্রীতদাস হিসাবে বিক্রি করা হয়েছিল| 18 ওরা একটি দড়ি য়োষেফের পাযে জড়িয়ে বেঁধে দিল| ওরা তার গলায একটা লোহার রিং পরিযে দিল| 19 ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা য়তদিন পর্য়ন্ত না প্রকৃতপক্ষে ঘটল, ততদিন য়োষেফ ক্রীতদাসই ছিল| প্রভুর বার্তা প্রমাণ করেছিল য়ে য়োষেফ নির্দোষ ছিল| 20 তাই মিশরের রাজা তাকে মুক্ত করে দিল| সেই জাতির নেতা তাকে কারাগারের বাইরে বের করে দিল| 21 সে তাকে নিজের বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিল| য়োষেফও তার প্রভুর সমস্ত সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ করত| 22 য়োষেফ অন্যান্য নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিল| বৃদ্ধ লোকদেরও য়োষেফ শেখাতো| 23 পরে ইস্রায়েল মিশরে এলো| যাকোব হামের দেশে থাকলো| 24 যাকোবের পরিবার বেশ বড় হয়ে গেল| ওদের শত্রুদের থেকে ওরা অনেক শক্তিশালী হয়ে গেল| 25 এই মিশরীযরা যাকোবের পরিবারকে ঘৃণা করতে লাগল| ওরা ওদের ক্রীতদাসদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল| 26 তাই ঈশ্বর তাঁর দাস মোশি এবং তাঁর নির্বাচিত যাজক হারোণকে পাঠিয়েছিলেন| 27 ঈশ্বর মোশি ও হারোণকে ব্যবহার করে হামের দেশে বহু অভাবনীয কাজ করিয়েছিলেন| 28 ঈশ্বর নীরন্ধ্র অন্ধকার পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু মিশরীযরা তবুও তাঁর কথা শুনতে অস্বীকার করল| 29 তাই ঈশ্বর জলকে রক্তে পরিণত করলেন এবং ওদের সব মাছ মারা গেল| 30 ওদের দেশ ব্যাঙে ভরে গিয়েছিল| রাজার শোবার ঘরে পর্য়ন্ত ব্যাঙ ঢুকে পড়েছিলো| 31 ঈশ্বর আজ্ঞা দিলেন, উকুন ও মাছিরা উড়ে এলো| তারা দেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ল! 32 ঈশ্বর বৃষ্টিকে শিলাবৃষ্টিতে পরিণত করলেন| সারা দেশে বিদ্য়ুত্পাত হল| 33 ঈশ্বর ওদের দ্রাক্ষালতা ও ডুমুর গাছ ধ্বংস করে দিলেন| ঈশ্বর ওদের দেশের সব গাছ ধ্বংস করে দিলেন| 34 ঈশ্বর আজ্ঞা দিলেন এবং গঙ্গাফড়িং ও পঙ্গপালরা এলো| ওদের সংখ্য়া গণনারও অতীত| 35 ঝাঁকে ঝাঁকে গঙ্গাফড়িং ও পঙ্গপালরা দেশের সব গাছপালা ও দ্রাক্ষালতা, ডুমুর গাছগুলো খেয়ে শেষ করে দিল| 36 এরপর ঈশ্বর, দেশের প্রত্যেকটি প্রথমজাতকে হত্যা করলেন| ঈশ্বর সমস্ত জোষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করলেন| 37 তারপর ঈশ্বর মিশর থেকে তাঁর লোকদের বের করে নিয়ে এলেন| আসার সময় ওরা সঙ্গে করে সোনা রূপো নিয়ে এলো| ঈশ্বরের কোন লোকই হোঁচট খায় নি বা পড়ে যায় নি| 38 ঈশ্বরের লোকদের চলে য়েতে দেখে মিশর ভীষণ খুশী হয়েছিলো, কেননা ওরা ঈশ্বরের লোকদের ভয় পেতো| 39 ঈশ্বর তাদের ওপর কম্বলের মত একটি মেঘ বিস্তৃত করে দিলেন| রাত্রে তাঁর লোকদের আলো দেখানোর জন্য, ঈশ্বর তাঁর অগ্নিস্তম্ভ ব্যবহার করলেন| 40 লোকরা খাদ্য চাইল এবং ঈশ্বর তাদের কাছে কোযেল এনে দিলেন এবং তাদের ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য ঈশ্বর আকাশ থেকে তাদের রুটি দিলেন| 41 ঈশ্বর শিলাটিকে অর্ধেক করে ভাঙলেন এবং সেখান থেকে জল বেরিয়ে এলো| মরুভূমিতে একটা নদী বইতে শুরু করলো! 42 ঈশ্বর তাঁর পবিত্র প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করলেন| তাঁর দাস অব্রাহামের কাছে তিনি য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা তিনি স্মরণ করলেন| 43 ঈশ্বর মিশর থেকে তাঁর নির্বাচিত লোকদের বের করে আনলেন| লোকজন মহা উল্লাস করতে করতে, আনন্দ গান গাইতে গাইতে বেরিয়ে এলো! 44 তারপর ঈশ্বর তাদের সেই দেশ দিলেন যেখানে অন্যান্য লোকরা বাস করেছিলো, অন্যান্য লোকরা যার জন্য পরিশ্রম করেছিলো, ঈশ্বরের লোকরা সেই সব জিনিস পেলো| 45 কেন ঈশ্বর এই সব করলেন? যাতে তাঁর লোকরা তাঁর বিধি মান্য করে| যাতে তারা তাঁর শিক্ষামালাসমূহ সতর্কতার সঙ্গে পালন করে| প্রভুর প্রশংসা কর!
1 প্রভুর প্রশংসা কর! প্রভুকে ধন্যবাদ দাও কারণ তিনি মঙ্গলময়! ঈশ্বরের প্রেম চিরন্তন! 2 ঈশ্বর য়ে প্রকৃতপক্ষে কত মহান তা কেউই বর্ণনা করে বলতে পারবে না| কোন ব্যক্তিই ঈশ্বরের য়থেষ্ট প্রশংসা করতে পারে না| 3 যারা ঈশ্বরের নির্দেশ মানে তারা সুখী হয়| ওই সব লোক সর্বদাই ভালো কাজ করে| 4 হে প্রভু, যখন আপনি আপনার লোকদের দয়া করবেন, তখন আমার কথা স্মরণে রাখবেন| যখন আপনি আপনার লোকদের রক্ষা করবেন তখন আমায় মনে রাখতে ভুলে যাবেন না| 5 আপনার পছন্দ করা লোকদের জন্য আপনি য়ে সব ভালো কাজ করেন, আমাকেও তার অংশীদার হতে দিন| আপনার জাতির সঙ্গে আমাকেও আনন্দ করতে দিন| আপনার লোকদের সঙ্গে আমাকেও আপনার প্রশংসা করতে দিন| 6 য়েমন ভাবে আমাদের পূর্বপুরুষরা পাপ করেছে, আমরাও তেমন ভাবেই পাপ করেছি| আমরা ভুল করেছি| আমরা গর্হিত কাজ করেছি! 7 হে প্রভু, মিশরে আপনি য়ে সব অলৌকিক কাজ করেছিলেন তা থেকে আমাদের পূর্বপুরুষরা কিছুই শেখেনি| তারা আপনার ভালবাসা ও দয়া মনে রাখে নি| লোহিত সাগরের ধারে, আমাদের পূর্বপুরুষরা, আপনার বিরুদ্ধাচরণ করেছিল| 8 কিন্তু তাঁর পবিত্র নামের মহিমার জন্য ঈশ্বর তাদের রক্ষা করেছিলেন| তাঁর মহত্ শক্তি প্রদর্শনের জন্য ঈশ্বর ওদের রক্ষা করেছিলেন| 9 ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং লোহিত সাগর শুকিয়ে গিয়েছিলো| শুকনো মরুভূমি দিয়ে চলার মত, তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের সমুদ্রের গভীরতার ভেতর দিয়ে ডাঙায নিয়ে গিয়েছিলেন| 10 ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের শত্রুদের হাত থেকে আমাদের বাঁচিয়েছিলেন! তাদের শত্রুদের হাত থেকে ঈশ্বর তাদের উদ্ধার করেছিলেন| 11 ঈশ্বর সমুদ্র দ্বারা ওদের শত্রুদের আবৃত করেছিলেন! ওদের একজন শত্রুও পালাতে পারে নি! 12 তারপর আমাদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেছিলেন| তাঁরা তাঁর প্রশংসা করেছিলেন| 13 কিন্তু ঈশ্বর যা করেছিলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা খুব তাড়াতাড়ি তা ভুলে গিয়েছিলেন| তাঁরা ঈশ্বরের পরামর্শের জন্য অপেক্ষা করেন নি| 14 আমাদের পূর্বপুরুষরা মরুভূমিতে ক্ষুধার্ত হয়েছিলেন| উষর প্রান্তরে তাঁরা ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিলেন| 15 কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা যা চেয়েছিলেন, ঈশ্বর ওদের তাই দিয়েছিলেন| কিন্তু ঈশ্বর ওঁদের এক ভযাবহ রোগও দিয়েছিলেন| 16 পবিত্র শিবিরে লোকরা বিশ্বস্ত রইল এবং মোশি ও হারোণের প্রতি তাদের উদ্যম দেখাল| 17 কিন্তু দাথন এবং অবীরামের গোষ্ঠীর দিকে মাটি দ্বিধাবিভক্ত হল, তাদের গিলে ফেলল এবং ঢেকে দিল| 18 তারপর এক আগুনের হল্কা সেই জনতাকে পুড়িয়ে দিলো| তারপর আগুন সেই সব দুষ্ট লোকদের পুড়িয়ে দিলো| 19 হোরেব পর্বতে তারা একটা সোনার বাছুর তৈরী করেছিল| তারা সেই মূর্ত্তিকে পূজো করেছিলো| 20 এই ভাবে তৃণগ্রাসী বলদ মূর্ত্তির সঙ্গে ওদের মহিমাময় ঈশ্বরের আদান-প্রদান করেছিলো! 21 ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্ষা করেছিলেন! কিন্তু তাঁরা তাঁকে সম্পূর্ণ ভুলে গিয়েছিলেন| মিশরে য়ে ঈশ্বর বিরাট অলৌকিক কাজ করেছিলেন, তাঁকে তাঁরা ভুলে গেলেন| 22 হামের দেশে ঈশ্বর আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেছিলেন| লোহিত সাগরের ধারে ঈশ্বর ভয়ঙ্কর কাজ করেছিলেন| 23 ঈশ্বর ওসব লোককে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন| কিন্তু মোশি, যাকে তিনি মনোনীত করেছিলেন তিনি ঈশ্বরকে নিরস্ত করেন| ঈশ্বর ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন, কিন্তু মোশি পথ রোধ করে দাঁড়ান তাই ঈশ্বর সেইসব লোকদের আর ধ্বংস করেন নি| 24 কিন্তু তারপর এই সব লোক কনানের চমত্কার রাজ্য়ে প্রবেশ করতে অস্বীকার করে| ওরা বিশ্বাস করেনি য়ে, ওই দেশে (কনানে) বসবাসকারী মানুষদের পরাজিত করতে ঈশ্বর ওদের সাহায্য করবেন| 25 আমাদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ করতে তাঁবুর ভেতরে রয়ে গিয়েছিলেন| তাঁরা প্রভুর কন্ঠস্বর শুনতে অস্বীকার করেছিলেন| 26 তাই ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি করেছিলেন য়ে তাঁরা মরুভূমিতে মারা যাবেন| 27 ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে, তিনি অন্য লোকদের তাদের উত্তরপুরুষদের পরাজিত করতে দেবেন| ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে, আমাদের পূর্বপুরুষদের তিনি বিভিন্ন জাতিদের মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন| 28 তারপর, বাল-পিযোরে, ঈশ্বরের লোকরা বাল মূর্ত্তির পূজা করায য়োগ দিয়েছিলো| ঈশ্বরের লোকরা জংলী দলটিতে য়োগ দিয়েছিলো এবং মৃত লোকের সম্মানে উত্সর্গ করা বলি আহার করেছিলো| 29 ঈশ্বর তাঁর লোকদের প্রতি ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন এবং তিনি তাদের ভীষণ অসুস্থ করে দিয়েছিলেন| 30 কিন্তু পীনহস ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলো এবং ঈশ্বর অসুস্থতা রদ করেছিলেন| 31 ঈশ্বর জানতেন য়ে পীনহস খুব ভালো একটা কাজ করেছিলো| ঈশ্বর সেটা চিরদিন, অনন্তকালের জন্য স্মরণে রাখবেন! 32 মরাবীর কাছে লোকজন প্রচণ্ড ক্রোধান্বিত হল| তারা মোশিকে দিয়ে কিছু কু-কাজ করালো| 33 কারণ ওই লোকরা মোশিকে ভীষণ বিমর্ষ করে তুললএবং সে কিছু চিন্তা-ভাবনা না করেই কথা বলল| 34 ঈশ্বর তাঁর লোকদের কনানে অন্য জাতিসমূহ যারা বাস করছিল তাদের ধ্বংস করে দিতে বললেন| কিন্তু ঈস্রাযেলের লোকরা ঈশ্বরের কথা মান্য করে নি! 35 তারা অন্য জাতিগুলোর সঙ্গে মেলামেশা করেছিল এবং তারা যা করত ওরা তাই করতে শিখেছিল| 36 ওই লোকগুলো ঈশ্বরের লোকদের জন্য ফাঁদের মতই ভয়ঙ্কর হল| ঈশ্বরের লোকরাও সেইসব মূর্ত্তিসমূহের পূজা করতে শুরু করলো যাদের ওরা পূজা করত| 37 এমনকি ঈশ্বরের লোকেরা তাদের সন্তানদের পর্য়ন্ত হত্যা করেছিলো এবং ওই দানবদের কাছে উত্সর্গ করেছিলো| 38 ঈশ্বরের লোকরা নিস্পাপ লোকদের হত্যা করেছিলো| ওরা ওদের নিজেদের সন্তানদেরও হত্যা করেছিলো এবং তাদের মূর্ত্তিসমূহের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করেছিলো| 39 তাই অন্য লোকদের পাপে ঈশ্বরের লোকরা অপবিত্র হয়ে উঠেছিল| ঈশ্বরের লোকরা তাদের ঈশ্বরের কাছে অবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলো এবং অন্য লোকরা যা করতো ওরাও তাই করতে শুরু করেছিল| 40 ঈশ্বর তাঁর লোকজনের ওপরে চটে গেলেন| তাদের ব্যাপারে ঈশ্বর ক্লান্ত হয়ে গেলেন! 41 ঈশ্বর তাঁর লোকদেরকেউ চায় নি এমন কিছুতে পরিবর্তন করে দিলেন| ঈশ্বর ওদের শত্রুদের দিয়ে ওদের শাসন করালেন| 42 ঈশ্বরের লোকদের শত্রুরা ওদের দাবিয়ে রাখলো এবং তাদের নিজেদের ক্ষমতার মধ্যে রাখলো| 43 ঈশ্বর তাদের বহুবার রক্ষা করেছিলেন কিন্তু তারা ঈশ্বরের উপদেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল|অতএব, এই কারণে লোকদের সম্মানে খাটো করা হয়েছিল| 44 কিন্তু ঈশ্বরের লোকরা যখনই সমস্যায় পড়েছে ওরা সাহায্যের জন্য ঈশ্বরকে ডেকেছে এবং প্রত্যেকবারই ঈশ্বর ওদের প্রার্থনা শুনেছেন| 45 ঈশ্বর সর্বদাই তাঁর চুক্তির কথা স্মরণে রেখেছিলেন এবং তাঁর মহত্ প্রেম দিয়ে তিনি সর্বদাই ওদের স্বস্তি দিয়েছিলেন| 46 অন্য জাতিরা ওদের বন্দী হিসেবে নিয়ে গিয়েছিলো| কিন্তু তাঁর লোকদের প্রতি ওদের সদয় করেন| 47 হে প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, আমাদের রক্ষা করুন! আমাদের অন্য সব জাতি থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন যাতে আমরা আপনার পবিত্র নামের প্রশংসা করতে পারি এবং বন্দনা গান করে আপনাকে সম্মান করতে পারি| 48 ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরের বন্দনা কর| ঈশ্বর চির বিরাজমান এবং তিনি চিরদিন বিরাজিত থাকবেন| সব লোকরা বলল, “আমেন! প্রভুর প্রশংসা কর!”
1 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও, কেননা তিনি মঙ্গলময়| তাঁর প্রেম চিরন্তন! 2 প্রভু যাদের রক্ষা করেছেন, তারা প্রত্যেকে অবশ্যই এই একই কথাগুলি উচ্চারণ করবে| প্রভু ওদের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন| 3 প্রভু বিভিন্ন দেশ থেকে তাঁর লোকদের জড় করেছেন| তাদের তিনি পূর্ব ও পশ্চিম এবং উত্তর ও দক্ষিণ থেকে নিয়ে এসেছেন| 4 ওদের কেউ কেউ মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো| ওরা বাঁচার জন্য অন্য জায়গা খুঁজছিলো কিন্তু ওরা কোন শহর খুঁজে পাচ্ছিলো না| 5 ক্ষুধা-তৃষ্ণায় ওরা ক্রমশঃই দুর্বল হয়ে পড়ছিলো| 6 তখন ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকলো তাই তিনি ওদের বিপদ থেকে উদ্ধার করলেন| 7 ঈশ্বর সোজা তাদের সেই শহরে নিয়ে গেলেন যেখানে তারা বাস করতে পারে| 8 প্রভুকে তাঁর প্রেমের জন্য এবং তাঁর আশ্চর্য়্য় কার্য়্য়, যা তিনি লোকদের জন্য করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ দাও| 9 ঈশ্বর তৃষিত আত্মার তৃষ্ণা নিবৃত্ত করেন; ঈশ্বর সুন্দর জিনিস দিয়ে ক্ষুধিত আত্মার সন্তুষ্টি করেন| 10 ঈশ্বরের কিছু লোক বন্দী ছিল, ওরা অন্ধকার গারদে বদ্ধ হয়েছিলো| 11 কেন? কারণ ঈশ্বর যা বলেছেন, ওরা তার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলো| তারা পরাত্পরের উপদেশসমুহ মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো| 12 ওদের কুকর্মের জন্য ঈশ্বর ওদের জীবনকে কঠিনতর করে তুলেছিলেন| ওরা হোঁচট খেয়ে পড়লো কিন্তু ওদের সাহায্যের জন্য কেউ ছিল না| 13 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো| তাই ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডেকেছিলো এবং তিনি তাদের সমস্যাসমূহ থেকে বাঁচিয়েছিলেন| 14 ঈশ্বর ওদের অন্ধকার কারাগার থেকে বাইরে বের করে এনেছিলেন| য়ে দড়ি দিয়ে ওদের বেঁধে রাখা হয়েছিলো, ঈশ্বর তা ছিন্ন করেছিলেন| 15 প্রভুর প্রেমের জন্য এবং মানুষের জন্য তিনি য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দাও| 16 শত্রুদের পরাজিত করতে ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করেন| ঈশ্বর ওদের পিতলের দরজা ভেঙে দিতে পারেন| ঈশ্বর ওদের ফটকের লোহা ভেঙে দিতে পারেন| 17 কিছু লোক ওদের পাপসমূহ ও অন্যায়গুলোকে, নিজেদের নির্বোধে পরিণত করতে দেয়| তারা তাদের পাপসমূহের জন্য ভয়ঙ্কর ভাবে ভুগবে| 18 ওরা আহার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলো এবং প্রায় মারা গিয়েছিলো| 19 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো, তাই ওরা প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছিলো| এবং ওদের সমস্যা থেকে তিনি ওদের বাঁচিয়েছিলেন| 20 ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং ওদের সমস্যা মুক্ত করেছিলেন| তাই ওই লোকরা মৃত্যু থেকে রক্ষা পেয়েছিলো| 21 প্রভুকে তাঁর প্রেমের জন্য এবং লোকদের জন্য তিনি য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন তার জন্য ধন্যবাদ দাও| 22 প্রভু যা কিছু করেছেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে, প্রভুর কাছে বলি উত্সর্গ কর| প্রভু যা যা করেছেন তা আনন্দের সঙ্গে বল| 23 কিছু লোক নৌকা করে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলো, ওদের জীবিকা ওদের মহাসমুদ্রে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো| 24 ওই সব লোক দেখেছে প্রভু কি করতে পারেন| সমুদ্রে তিনি য়ে সব বিস্ময়কর কাজ করেছেন, তা ওরা দেখেছে| 25 ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং প্রবল বাতাস বইতে শুরু করেছিলো| ঢেঊগুলো ক্রমেই উচ্চ থেকে উচ্চতর হয়েছিল| 26 ঢেউগুলো ওদের আকাশে তুলে দিচ্ছিলো এবং সমুদ্রের গভীরে নামিয়ে দিচ্ছিলো| সে এমন ভয়ঙ্কর ঝড় ছিলো য়ে ওরা সাহস হারিযে ফেলেছিলো| 27 ওরা টল্মল করছিলো এবং নেশাগ্রস্তের মত বোধ করছিলো| নাবিক হিসেবে তাদের ক্ষমতা কোন কাজেই লাগেনি| 28 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো তাই ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডেকেছিলো এবং তিনি সমস্যাসমুহ থেকে ওদের রক্ষা করেছিলেন| 29 ঈশ্বর ঝড় থামিযে দিয়েছিলেন| তিনি সমুদ্রকে শান্ত করে দিয়েছিলেন|30সমুদ্র শান্ত দেখে নাবিকরা খুশী হয়েছিলো এবং তারা যেখানে য়েতে চেয়েছিলো সেখানে ঈশ্বর তাদের নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছিলেন|31সমুদ্র শান্ত দেখে নাবিকরা খুশী হয়েছিলো এবং তারা যেখানে য়েতে চেয়েছিলো সেখানে ঈশ্বর তাদের নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছিলেন|31তাঁর প্রেমের জন্য এবং লোকদের জন্য তিনি য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন, তার জন্য প্রভুকে ধন্যবাদ দাও|32বিরাট মহাসমাজের সামনে প্রভুর মহাসভায প্রশংসা কর| প্রবীণ নেতারা যখন একত্রিত হবে তখন তাঁর প্রশংসা করো|33ঈশ্বর নদীগুলিকে মরুভূমিতে পরিণত করেছেন| ঈশ্বর ঝর্ণার প্রবাহ বন্ধ করেছেন|34উর্বর জমিকে ঈশ্বর পরিবর্তিত করেছেন এবং তা অকাজের নোনা জমিতে পরিণত হয়েছে| কেন কারণ সেই অঞ্চলে মন্দ লোকরা বসবাস করতো|35ঈশ্বর মরুভূমিকে পরিবর্তিত করলেন এবং তা জলময় সরোবরে পরিণত হল| শুকনো জমি থেকে ঈশ্বর প্রবাহের নিমিত্ত তৈরী করলেন|36ক্ষুধার্ত মানুষকে ঈশ্বর সেই দেশে নিয়ে এলেন এবং তারা বসবাসের জন্য শহর নির্মাণ করলো|37ওরা ওদের জমিতে বীজ বুনলো| ওরা জমিতে দ্রাক্ষালতা পুঁতলো এবং ওরা খুব ভাল ফসল পেলো|38ঈশ্বর ওদের আশীর্বাদ করলেন| ওদের পরিবার বেড়ে উঠতে লাগলো| ওদের বহুবিধ গৃহপালিত পশু হলো|39দুর্য়োগ এবং সমস্যার জন্য ওদের পরিবারগুলো ছোট এবং দুর্বল ছিলো|40ঈশ্বর ওদের নেতাদের লজ্জিত ও বিব্রত করালেন| ঈশ্বর ওদের মরুভূমির সেই স্থানে ঘোরালেন যেখানে কোন রাস্তাই নেই|41কিন্তু ঈশ্বর তারপর ওই ভাগ্যহত লোকদের দূর্দশা থেকে উদ্ধার করলেন| এবং এখন ওদের পরিবার মেষের পালের মত বড় হয়েছে|42সত্ লোকরা এটা দেখে এবং তারা সুখী হয়| কিন্তু, মন্দ লোকরা এটা দেখে এবং তারা জানে না কি বলবে|43কোন ব্যক্তি যদি জ্ঞানী হয় তবে সে এই সব গুলো স্মরণে রাখবে এবং সে হৃদয়ঙ্গম শুরু করবে, ঈশ্বরের প্রকৃত প্রেম কি|
1 ঈশ্বর, আমি প্রস্তুত, আমার সমস্ত হৃদয় ও আত্মা দিয়ে আপনার প্রশংসা গান করার জন্য আমি প্রস্তুত| 2 হে বীণা এবং অন্যান্য তন্ত্রবাদ্য, সূর্য়কে জাগিয়ে দাও! 3 হে প্রভু, বিভিন্ন জাতির মধ্যে আমরা আপনার প্রশংসা করবো| অন্যান্য লোকদের মাঝে আমরা আপনার প্রশংসা করবো| 4 হে প্রভু, আপনার প্রেম আকাশের চেয়ে উঁচু| আপনার প্রেম উচ্চতম মেঘের চেয়েও উঁচুতে অবস্থিত| 5 হে ঈশ্বর, স্বর্গের ওপের উঠুন! সারা বিশ্বকে আপনার মহিমা দেখতে দিন| 6 হে ঈশ্বর, আপনার মিত্রদের রক্ষার জন্য এটা করুন| আমার প্রার্থনার উত্তর দিন এবং আপনার পরাক্রমী শক্তি ব্যবহার করুন| 7 ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে বলেছেন, “আমি যুদ্ধে জয়ী হবো এবং জয় করে সুখী হবো! আমার লোকজনদের মধ্যে আমি এই ভূখণ্ড ভাগ করে দেবো| আমি ওদের শিখিম উপত্যকা দেবো| আমি ওদের সুক্কোত উপত্যকা দেবো| 8 গিলিয়দ ও মনঃশিও আমার থাকবে| ইফ্রযিম আমার শিরস্ত্রাণ হবে| যিহূদা হবে আমার বিচারদণ্ড| 9 মোযাব আমার পা ধোযার পাত্র হবে| ইদোম হবে আমার পাদূকাবাহক দাস| আমি পলেষ্টীয়দের পরাজিত করবো এবং জয়ধ্বনি দেবো|” 10 কে আমাকে শত্রুর দূর্গে নেতৃত্ব দেবে? কে আমাকে ইদোমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেতৃত্ব দেবে? 11 ঈশ্বর একমাত্র আপনিই আমাদের সাহায্য করতে পারেন| কিন্তু আপনি আমাদের ত্যাগ করেছেন! আপনি আমাদের সৈন্যদের সঙ্গে যান নি! 12 ঈশ্বর আমাদের শত্রুদের পরাজিত করতে আমাদের সাহায্য করুন! লোকেরা আমাদের সাহায্য করতে পারবে না! 13 একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের শক্তিশালী করে তুলতে পারেন| ঈশ্বরই আমাদের শত্রুদের পরাজিত করতে পারেন!
1 ঈশ্বর, আমার প্রার্থনা শোনা থেকে বিরত হবেন না! 2 দুষ্ট লোকরা আমার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে| যা সত্য নয় ওরা তাই বলছে| 3 লোকেরা আমার সম্পর্কে অপ্রীতিকর কথাবার্তা বলছে| অকারণে লোকরা আমায় আক্রমণ করছে| 4 আমি ওদের ভালোবেসেছিলাম, কিন্তু ওরা আমায় ঘৃণা করে| তাই ঈশ্বর, এখন আমি আপনার কাছে শরণাগত| 5 আমি ওইসব লোকেরা জন্য ভাল কাজই করেছিলাম কিন্তু ওরা আমার প্রতি মন্দই করেছে| আমি ওদের ভালোবেসেছিলাম, কিন্তু ওরা আমায় ঘৃণা করেছে| 6 আমার শত্রু য়ে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য ওকে শাস্তি দিন| একজন লোককে খুঁজে বের করুন য়ে প্রমাণ দেবে ও ভুল করেছে| 7 বিচারককে এই সিদ্ধান্ত নিতে দিন য়ে আমার শত্রু ভুল করেছে এবং সে দোষী| আমার শত্রুরা যা যা বলে তা য়েন ওর পক্ষে অহিতকরই হয়| 8 আমার শত্রুর শীঘ্রই মৃত্যু হোক| অন্য লোকরা তার স্থান নিক| 9 আমার শত্রুর সন্তানদের অনাথ এবং তার স্ত্রীকে বিধবা করে দিন| 10 ওরা য়েন ঘর বাড়ী হারিযে ভিখারী হয়ে যায়| 11 আমার শত্রু যার কাছে ঋণী সে য়েন ওর সব কিছু নিয়ে নেয| আমার শত্রু য়ে সব জিনিসের জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিল, সেগুলো কোন আগন্তুক এসে নিয়ে যাক| 12 কামনা করি, কোন লোক য়েন আমার শত্রুর প্রতি সদয় না হয়| কামনা করি, কোন লোক য়েন ওর ছেলেদের প্রতি ক্ষমা না দেখায়| 13 আমার শত্রুকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিন| পরবর্তী প্রজন্ম য়েন সব কিছু থেকে ওর নাম মুছে দেয়| 14 প্রভু য়েন আমার শত্রুর পূর্বপুরুষদের পাপ সম্পর্কে অবগত হোন| ওর মাযের পাপও য়েন কখনও ধুয়ে না যায়| 15 আমি আশাকরি প্রভু চিরদিন ওই সব পাপগুলো স্মরণে রাখবেন| এবং আমি আশা করি, আমার শত্রুকে সম্পূর্ণ ভুলে য়েতে তিনি লোকদের বাধ্য করবেন| 16 কেন? কারণ ওই মন্দ লোকটা কোনদিন কোন ভালো কাজ করে নি| সে কোনদিন কাউকে ভালোবাসে নি| দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জীবনকে সে কঠিন করে তুলেছিলো| 17 ওই লোকটা সর্বদাই অন্যদের অভিশাপ দিতে ভালবাসত| তাই ওর ক্ষেত্রেই ওই সব মন্দ বিষয় ফলতে দিন| ওই মন্দ লোকটা কোনদিন চায় নি, অন্য কারো ভালো হোক| তাই ওর ভালো হতে দেবেন না| 18 অভিশাপ য়েন ওর বস্ত্র হয়| অভিশাপ য়েন ওর তৃষ্ণার জল হয়, অভিশাপগুলো য়েন ওর দেহে মাখা তেল হয়| 19 দুষ্ট লোকে য়ে পোশাক পরে অভিশাপগুলো য়েন সেই পোশাকসমূহ হয় এবং অভিশাপই য়েন ওদের কোমরবন্ধ হয়| 20 আমার শত্রুর প্রতি প্রভু য়েন এসব করেন| যারা আমায় খুন করতে চায় তাদের প্রতি প্রভু য়েন এসব করেন| 21 প্রভু, আপনি আমার সদাপ্রভু| তাই আমার প্রতি এমন ব্যবহার করুন যা আপনার নামের মর্য়াদা এনে দেবে| আপনার প্রেম খুব মহান, তাই আমার রক্ষা করুন| 22 আমি নিছক একজন অসহায় দরিদ্র মানুষ| প্রকৃতই আমি ভগ্ন হৃদয়ের এক দুঃখী মানুষ| 23 আমি এমন অনুভব করি য়েন, বেলা শেষের লম্বা ছায়ার মত আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে| আমি নিজেকে অগ্রাহ্য করা ছারপোকার মত মনে করি| 24 ক্ষুধার কারণে আমার হাঁটু দুটো দুর্বল| ওজন কমে গিয়ে আমি ক্রমশঃই রোগা হয়ে যাচ্ছি| 25 মন্দ লোকরা আমায় অপমান করে| আমার দিকে তাকিযে ওরা মাথা নাড়ায| 26 প্রভু আমার ঈশ্বর, আমায় সাহায্য করুন| আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন এবং আমায় উদ্ধার করুন! 27 তখন ওই লোকরা জানতে পারবে য়ে আপনি আমায় সাহায্য করেছিলেন| ওরা জানতে পারবে য়ে আপনার শক্তিই আমাকে সাহায্য করেছিলো| 28 ওই মন্দ লোকরা আমায় অভিশাপ দেয়| কিন্তু আপনি আমায় আশীর্বাদ করতে পারেন প্রভু| ওরা আমায় আক্রমণ করেছে, তাই ওদের পরাজিত করুন| তাহলে আপনার দাস, আমি সুখী হব| 29 আমার শত্রুদের বিব্রত করে দিন! ওদের বস্ত্রাবরণ হিসেবে ওরা য়েন ওদের লজ্জাই পরিধান করে| 30 আমি প্রভুকে ধন্যবাদ দিই| বহু লোকদের সামনে আমি তাঁর প্রশংসা করি| 31 কেন? কারণ অসহায় লোকদের পাশে প্রভু দাঁড়ান| ওকে যারা মৃত্যুদণ্ড দিতে চায়, তাদের থেকে ঈশ্বর ওরে রক্ষা করেন|
1 প্রভু আমার মনিবকে বলেছেন, “য়তক্ষণ পর্য়ন্ত আমি তোমার শত্রুকে তোমার অধীনে না এনে দিই ততক্ষণ আমার ডান দিকে বস|” 2 প্রভু তোমার রাজ্য বাড়াতে সাহায্য করবেন| তোমার রাজ্য সিয়োনে শুরু হবে য়তদিন পর্য়ন্ত তুমি তোমার শত্রুদের তাদের নিজেদের রাজ্য়ে শাসন করবে, ততদিন তা বাড়তে থাকবে| 3 যখন আপনি আপনার সৈন্যদের একত্রিত করবেন, তখন আপনার লোকরা স্বেচ্ছায আপনার সঙ্গে য়োগ দেবে| ওরা ওদের বিশেষ পোশাক পরে অতি প্রত্যুষে মিলিত হবে| জমিতে পড়া শিশির কণার মত ওই তরুণরা আপনার চারদিকে থাকবে| 4 প্রভু একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং তিনি তাঁর মত পরিবর্তন করবেন না| “তুমি চিরদিনের জন্য একজন যাজক, একটি বিশিষ্ট রীতির যাজকের মত, য়েমন মল্কীষেদক ছিল সেইরকম|” 5 আমার প্রভু আপনার ডান দিকে রয়েছে| যখন তিনি ক্রুদ্ধ হন তখন তিনি অন্যান্য রাজাদের পরাজিত করেন| 6 ঈশ্বর জাতি সকলের বিচার করবেন| জমিটি মৃতদেহে ঢেকে যাবে এবং ঈশ্বর শক্তিশালী জাতির নেতাদের শাস্তি দেবেন| 7 রাস্তার ধারের ঝর্ণা থেকে রাজাকে জল পান করতে হবে| তারপর সে বিজয়ী হয়ে তার মাথা তুলবে!
1 প্রভুর প্রশংসা কর! যেখানে সত্ লোকেরা জমাযেত হয়, সেই মণ্ডলীতে আমি সমস্ত অন্তর দিয়ে প্রভুকে ধন্যবাদ দিই| 2 প্রভু বিস্ময়কর কাজকর্ম করেন| ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে সব ভালো জিনিস আসে লোকরা তা চায়| 3 ঈশ্বর প্রকৃতই বিস্ময়কর এবং মহিমময় কার্য়্য় করেন| তাঁর ধার্মিকতা চিরদিনই বিরাজ করে| 4 ঈশ্বর, আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন যাতে আমরা মনে রাখি য়ে প্রভু সত্যিই দয়াময় ও ক্ষমাশীল| 5 ঈশ্বর, তাঁর অনুগামীদের আহার দেন| ঈশ্বর চিরদিন তাঁর চুক্তি স্মরণে রাখেন| 6 ঈশ্বর য়ে সব শক্তিশালী জিনিসগুলি করেছেন তা তাঁর লোকজনের কাছে প্রমাণ করেছে য়ে তিনি অন্য জাতিসমূহের অধিকারভুক্ত দেশ তাদের দিয়েছিলেন| 7 ঈশ্বর যা কিছু করেন সবই সুন্দর ও যথায়থ| তাঁর সব আজ্ঞাকেই নির্ভর করা চলে| 8 ঈশ্বরের আজ্ঞাসমূহ চিরদিন বজায় থাকবে| য়ে কারণে ঈশ্বর আজ্ঞাগুলি দিয়েছিলেন সেগুলি ছিল সত্ ও আন্তরিক| 9 তাঁর লোকেদের উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বর কাউকে পাঠিয়েছিলেন| ঈশ্বর তাদের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছেন তা চিরদিন বজায় থাকবে| ঈশ্বরের নাম ভয়ঙ্কর এবং পবিত্র| 10 ঈশ্বরের প্রতি ভয় এবং শ্রদ্ধা থেকেই প্রজ্ঞার সূত্রপাত হয়| যারা ঈশ্বরকে মান্য করে তারা খুব বিচক্ষণ| চিরদিন ঈশ্বরের প্রতি প্রশংসাগীত গাওয়া হবে|
1 প্রভুর প্রশংসা কর! সেই ব্যক্তি য়ে প্রভুকে ভয় ও শ্রদ্ধা করে সে খুব সুখী হবে| সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের আজ্ঞা পছন্দ করে| 2 তার উত্তরপুরুষরা এই পৃথিবীতে মহত্ হবে| সত্ লোকদের উত্তরপুরুষরা সত্যিকারের ধন্য হবে| 3 সেই ব্যক্তির পরিবার প্রচণ্ড ধনী হবে এবং তার ধার্মিকতা চিরদিন বজায় থাকবে| 4 সত্ লোকদের কাছে ঈশ্বর অন্ধকারে প্রতিভাত একটি আলোর মত| ঈশ্বর দয়াময়, ক্ষমাশীল এবং ভালো| 5 একজন ব্যক্তির পক্ষে দয়ালু এবং উদার হওয়া ভালো| একজন ব্যক্তির পক্ষে তার কর্মে সত্ থাকা ভালো| 6 সেই ব্যক্তির কোনদিন পতন হবে না| একজন ধার্মিক ব্যক্তিকে চিরদিন স্মরণ করা হবে| 7 সে দুঃসংবাদে ভীত হবে না| সে তার নিজের বিশ্বাসে দৃঢ় কেননা সে প্রভুতে আস্থা রাখে| 8 সেই ব্যক্তি নিজের বিশ্বাসে দৃঢ়| সে কখনও ভয় পাবে না| সে তার শত্রুদের পরাজিত করবে| 9 সেই ব্যক্তি দরিদ্রদের মুক্তহস্থে দান করে এবং তার ধার্মিকতা চিরদিন বজায় থাকবে| সে বিরাট সম্মান পাবে| 10 দুষ্ট লোকরা এই সব দেখে রেগে যায়| ওরা রাগে দাঁত কড়মড় করতে থাকে কিন্তু তারপর ওরা অদৃশ্য হয়ে যায়| যা সব থেকে বেশী করে দুষ্ট লোকরা চায় তা ওরা পাবে না|
1 প্রভুর প্রশংসা কর! প্রভুর দাসরা, তাঁর প্রশংসা কর! প্রভুর নামের প্রশংসা কর| 2 প্রভুর নাম এখনকার জন্য এবং চিরকালের জন্য ধন্য হোক| 3 যেখানে পূর্বদিকে সূর্য়োদয হয় সেখান থেকে শুরু করে পশ্চিমে যেখানে সূর্য় অস্ত যায় সেখান পর্য়ন্ত প্রভুর নামের প্রশংসা হোক| 4 প্রভু, সমস্ত জাতিগুলির উর্দ্ধে| তাঁর মহিমা আকাশ পর্য়ন্ত যায়| 5 কোন ব্যক্তিই আমাদের প্রভু ঈশ্বরের মত নয়| ঈশ্বর স্বর্গের উঁচু আসনে বসেন| 6 ঈশ্বর আমাদের থেকে এত উঁচুতে আছেন য়ে আকাশ ও পৃথিবীকে দেখতে হলে তাঁকে নীচের দিকে তাকাতে হয়| 7 ঈশ্বর দরিদ্র লোকদের ধূলো থেকে ওপরে তোলেন| আস্তাকুঁড় থেকে ঈশ্বর ভিখারীদের তুলে আনেন| 8 এবং সেই সব লোকদের ঈশ্বর খুব গুরুত্বপূর্ণ করে তোলেন| ঈশ্বর তাদের লোকদের ওপর নেতৃত্ব করবার জন্য উচ্চ স্থানগুলি দেন| 9 একজন নারীর কোন সন্তান না থাকতে পারে| কিন্তু ঈশ্বর তাকে সন্তান দেন ও সুখী করেন| প্রভুর প্রশংসা কর!
1 ইস্রায়েল মিশর ত্যাগ করলো| যাকোব সেই বিদেশ ত্যাগ করলো| 2 যিহূদা ঈশ্বরের বিশেষ মানুষ হলো| ইস্রায়েল তাঁর রাজত্ব হলো| 3 এই দেখে লোহিতসাগর দৌড়ে পালিয়েছিলো| য়র্দন নদীও ঘুরে দৌড় দিয়েছিলো| 4 পর্বতগুলো বুনো ছাগলের মত নেচে উঠেছিলো| পাহাড়গুলো মেষর মত নেচে উঠেছিলো| 5 লোহিতসাগর কেন তুমি ছুটে পালালে? য়র্দন নদী কেন তুমি ঘুরে দৌড় দিলে? 6 পর্বতমালা কেন তোমরা বুনো ছাগলের মত নাচলে? পাহাড় সকল, কেন তোমরা মেষশাবকের মত নাচলে? 7 যাকোবের প্রভু, ঈশ্বরের সামনে, পৃথিবী কেঁপে গিয়েছিলো| 8 ঈশ্বর হলেন এমন একজন, যিনি পাথর থেকে জলকে প্রবাহিত করান| ঈশ্বর শক্ত পাথর থেকে একটি জলধারা প্রবাহিত করেছিলেন|
1 হে প্রভু, আমাদের কোন সম্মান পাওয়া উচিত্ নয়| সব সম্মানই আপনার| আপনার প্রেমের জন্য আমরা আপনাকে বিশ্বাস করতে পারি| এই জন্য সকল সম্মান আপনার| 2 অন্য জাতির লোকরা কি করে বলতে পারে, “কোথায তোমাদের ঈশ্বর?” 3 ঈশ্বর স্বর্গে রয়েছেন এবং তিনি যা চান তাই করতে পারেন| 4 অন্যান্য জাতির “দেবতারা” শুধুই সোনা ও রূপার তৈরী মূর্ত্তি মাত্র| ওরা কিছু মানুষের তৈরী মূর্ত্তি মাত্র| 5 ওই মূর্ত্তিদের মুখ আছে কিন্তু কথা বলতে পারে না| ওদের চোখ আছে কিন্তু দেখতে পায় না| 6 ওদের কান আছে কিন্তু শুনতে পায় না| ওদের নাক আছে কিন্তু ঘ্রাণ নিতে পারে না| 7 ওদের হাত আছে কিন্তু অনুভব করতে পারে না| ওদের পা আছে কিন্তু চলতে পারে না এবং ওদের কন্ঠ থেকে কোন স্বর আসে না| 8 য়ে সব লোকরা মূর্ত্তিগুলি তৈরী করে এবং তাতে তাদের আস্থা রাখে, তারা কি ওই সব মূর্ত্তিগুলোর মত হয়ে যাবে? 9 হে ইস্রায়েলের লোকরা, প্রভুকে বিশ্বাস কর! প্রভু ওদের রক্ষক এবং তিনি তাদের সাহায্য করেন| 10 হারোণের পরিবার প্রভুকে বিশ্বাস কর! প্রভু ওদের রক্ষক এবং তিনি তাদের সাহায্য করেন| 11 প্রভুর অনুগামীরা, প্রভুকে বিশ্বাস কর! প্রভু ওদের রক্ষক এবং তিনি তাদের সাহায্য করেন| 12 প্রভু আমাদের স্মরণে রাখবেন এবং আমাদের আশীর্বাদ করবেন| প্রভু ইস্রায়েলকে আশীর্বাদ করবেন| প্রভু হারোণের পরিবারকে আশীর্বাদ করবেন| 13 প্রভু তাঁর সমস্ত অনুগামীদের আশীর্বাদ করবেন| দীন থেকে মহত্তম পর্য়ন্ত সকলকেই সমানভাবে আশীর্বাদ করবেন| 14 প্রভু, তোমাকে এবং তোমার সন্তানদের অনেক অনেক আশীর্বাদ দিন| 15 প্রভুই স্বর্গ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং প্রভু তোমাকে স্বাগত জানাচ্ছেন! 16 স্বর্গ ঈশ্বরের কিন্তু মানুষকে তিনি পৃথিবী দিয়েছেন| 17 মৃত লোকেরা ঈশ্বরের প্রশংসা করে না| মৃত লোকেরা, যারা কবরে রয়েছে তারা প্রভুর প্রশংসা করে না| 18 কিন্তু আমরা এখন প্রভুর ধন্যবাদ করছি এবং চিরদিন আমরা তাঁকে ধন্যবাদ দেবো| প্রভুর প্রশংসা কর!
1 প্রভু যখন আমার প্রার্থনা শোনেন, তখন আমার ভালো লাগে| 2 আমি যখন সাহায্যের জন্য ডাকি তখন তিনি আমার কথা শুনলে আমার ভালো লাগে| 3 আমি প্রায় মৃত হয়ে গিয়েছিলাম! আমার চার দিকে মৃত্যুর দড়িগুলো জড়ানো ছিল| কবর আমার ওপর ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে| আমি সংকটযুক্ত ও দুঃখিত হলাম| 4 তখন আমি প্রভুর নামকে আমন্ত্রণ করলাম| আমি বলেছিলাম “প্রভু, আমায় রক্ষা করুন!” 5 প্রভু মঙ্গলময় এবং করুণাময়| ঈশ্বর দয়াময়| 6 প্রভু অসহায় মানুষের যত্ন নেন| আমি সহায়হীন ছিলাম, প্রভু আমায় রক্ষা করেছেন| 7 হে আমার আত্মা, তোমার বিশ্রামের স্থানে ফিরে এস! প্রভু তোমার সম্পর্কে যত্ন নেবেন| 8 হে ঈশ্বর, আপনি আমার আত্মাকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করেছেন এবং আপনি আমার অশ্রু নিবারণ করেছেন| আপনি আমায় পতন থেকে রক্ষা করেছেন| 9 জীবিতদের রাজ্য়ে, আমি প্রভুর সেবা অব্যাহত রাখব| 10 যখন আমি বলেছি, “আমি ধ্বংস হয়ে গেছি” তখনও আমি বিশ্বাস করে চলেছি| 11 হ্যাঁ, যখন আমি বিমর্ষ ছিলাম, তখন বলেছিলাম, “সব লোকই মিথ্যাবাদী|” 12 আমি প্রভুকে কি আর দিতে পারি? আমার যা কিছু আছে সবই প্রভু দিয়েছেন! 13 তিনি আমায় রক্ষা করেছেন, তাই আমি তাঁকে পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করবো| আমি প্রভুর নাম আমন্ত্রণ করবো| 14 যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, প্রভুকে আমি তা দেবো| আমি এখন তাঁর সকল লোকের সামনে যাবো| 15 প্রভুর অনুগামীদের একজনের মৃত্যু প্রভুর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ| প্রভু, আমি আপনার একজন দাস! 16 আমি আপনার দাস, আমি আপনারই এক দাসীর সন্তান| প্রভু, আপনিই আমার প্রথম শিক্ষক ছিলেন! 17 আমি আপনাকে ধন্যবাদ উত্সর্গ করবো| আমি প্রভুর নাম স্মরণ করবো| 18 যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি প্রভুকে আমি তা দেবো| আমি এখন তাঁর সকল লোকের সামনে যাবো| 19 আমি জেরুশালেমের মন্দিরে যাবো| প্রভুর প্রশংসা কর|
1 তোমরা জাতিসকল, প্রভুর প্রশংসা কর| তোমরা সব লোকেরা, প্রভুর প্রশংসা কর| 2 প্রভু আমাদের খুব ভালোবাসেন! এবং প্রভু চিরদিনই আমাদের প্রতি সত্ থাকবেন| প্রভুর প্রশংসা কর!
1 প্রভুকে সম্মান কর, কারণ তিনিই ঈশ্বর| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির প্রবহমান থাকে! 2 ইস্রায়েল এই কথা বল, “তাঁর প্রকৃত প্রেম চির প্রবহমান থাকে!” 3 যাজকরা তোমরা বল, “তাঁর প্রকৃত প্রেম চির প্রবহমান থাকে!” 4 তোমরা লোকেরা যারা প্রভুকে উপাসনা কর, তোমরা বলো, “তাঁর প্রকৃত প্রেম চির প্রবহমান থাকে!” 5 আমি সমস্যায় পড়েছিলাম তাই সাহায্যের জন্য আমি প্রভুকে ডেকেছিলাম| প্রভু আমায় উত্তর দিয়েছেন এবং আমায় মুক্ত করেছেন| 6 আমার সঙ্গে প্রভু আছেন, তাই আমি ভয় পাবো না| লোকেরা আমাকে আহত করার জন্য কিছু করতে পারে না| 7 প্রভুই আমার সহায়| আমি আমার শত্রুদের পরাজিত দেখবো| 8 মানুষকে বিশ্বাস করার থেকে প্রভুকে বিশ্বাস করা অনেক ভালো| 9 তোমাদের নেতাদের বিশ্বাস করা থেকে প্রভুকে বিশ্বাস করা অনেক ভালো| 10 বহু শত্রু আমাকে ঘিরে ধরেছিল| কিন্তু প্রভুর শক্তির দ্বারা আমি আমার শত্রুদের পরাজিত করেছি| 11 আমার শত্রুরা ক্রমাগত আমায় ঘিরেই যাচ্ছিল| প্রভুর শক্তির সাহায্যে আমি ওদের পরাজিত করেছি| 12 ঝাঁক ঝাঁক মৌমাছির মত শত্রুরা আমায় ঘিরে ধরেছিলো| কিন্তু দ্রুত জ্বলনশীল ঝোপের মত ওরা শেষ হয়ে গিয়েছিলো| প্রভুর শক্তি দিয়ে আমি ওদের পরাজিত করেছি| 13 আমার শত্রুরা আমায় আক্রমণ করেছিলো এবং আমাকে প্রায় শেষ করে দিয়েছিলো| কিন্তু প্রভু আমায় সাহায্য করেছিলেন| 14 প্রভুই আমার শক্তি এবং আমার জয়গান! প্রভু আমায় রক্ষা করেন! 15 ধার্ম্মিক লোকেদের বাড়ীতে তুমি এই বিজয় উত্সব শুনতে পাবে| প্রভু আবার তাঁর মহান শক্তি প্রদর্শন করলেন| 16 প্রভুর বাহুগুলি জয়ে উত্তোলিত| তিনি আবার একবার তাঁর মহান শক্তি দেখালেন| 17 আমি মরবো না, আমি বেঁচে থাকবো এবং প্রভু কি করেছেন তা আমি বলবো| 18 প্রভু আমায় শাস্তি দিয়েছেন, কিন্তু তিনি আমায় মরতে দেন নি| 19 ন্যাযের সিংহদ্বারগুলি আমার জন্য খুলে যাও, আমি প্রভুর উপাসনা করতে ভেতরে আসবো| 20 ওইগুলো প্রভুর দ্বার| একমাত্র ধার্ম্মিক লোকরাই ওর মধ্যে দিয়ে য়েতে পারে| 21 হে প্রভু, আমার প্রার্থনার উত্তর দেওয়ার জন্য এবং আমাকে রক্ষা করবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই| 22 য়ে পাথরটিকে স্থপতিরা চায় নি, সেটাই হয়ে গেল মুখ্য প্রস্তর| 23 প্রভু এটি করেছেন এবং এটি দেখতে অদ্ভুত লাগছে! 24 আজকের দিন সেই দিন যা প্রভু সৃষ্টি করেছেন| আজ আমাদের আনন্দ করতে দিন, সুখী হতে দিন| 25 লোকেরা বললো, “প্রভুর প্রশংসা কর! প্রভু আমাদের রক্ষা করেছেন!” 26 সেই লোকটিকে স্বাগত জানাও, য়ে প্রভুর নাম নিয়ে আসছে|” যাজকরা উত্তর দিয়েছিলো, “আমরা তোমাকে প্রভুর গৃহে স্বাগত জানাই!” 27 প্রভুই ঈশ্বর এবং তিনি আমাদের গ্রহণ করেন| বলির জন্য একটা মেষ বাঁধ এবং সেটাকে বেদীর কোণে নিয়ে চল|” 28 প্রভু, আপনিই আমার ঈশ্বর, আপনাকে ধন্যবাদ দিই| আমি আপনার প্রশংসা করি! 29 প্রভুর প্রশংসা কর! কারণ তিনি মঙ্গলময়| তাঁর প্রকৃত প্রেম চিরন্তন|
1 সেই সব লোক যারা সত্ ও শুদ্ধ জীবনযাপন করে তারা সুখী| ওই সব লোক প্রভুর শিক্ষামালাকে অনুসরণ করে| 2 যারা প্রভুর চুক্তি মানে তারা সুখী| তারা সর্বান্তঃকরণ দিয়ে প্রভুকে মানে| 3 ওই সব লোক কোন মন্দ কাজ করে না| ওরা প্রভুকে মানে| 4 প্রভু, আপনি আমাদের আজ্ঞা দিয়েছেন এবং আপনি আমাদের ওই আজ্ঞাসমূহ পুরোপুরি মানতে বলেছেন| 5 প্রভু, সবসময় আমি যদি আপনার বিধি মানি, 6 তাহলে আমি যখন আপনার আদেশগুলি নিয়ে চিন্তা করব তখন আমি লজ্জিত হবো না| 7 তাহলে আমি প্রকৃতই আপনাকে সম্মান করতে পারবো, যখন আমি আপনার ন্যায্য বিধিগুলি সমীক্ষা করব| 8 প্রভু আমি আপনার আজ্ঞাগুলো পালন করবো তাই আমাকে ছেড়ে যাবেন না! 9 একজন যুবক কি করে শুদ্ধ জীবনযাপন করবে? আপনার আদেশসমুহ মেনে সে এরকম করতে পারবে| 10 সমগ্র অন্তর দিয়ে আমি প্রভুর সেবা করতে চেষ্টা করি| ঈশ্বর, আপনার আজ্ঞা মানতে আমায় সাহায্য করুন| 11 আপনার শিক্ষামালা আমি যত্ন করে অনুধাবন করি, যাতে আমি আপনার বিরুদ্ধে পাপ না করি| 12 হে প্রভু, আপনি ধন্য| আপনার বিধিসমূহ আমায় শেখান| 13 আমি আপনার সব প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তের কথা বলবো| 14 আমি য়ে কোন জিনিসের চেয়ে আপনার চুক্তিসমুহ জানতে বেশী উপভোগ করি| 15 আমি আপনার নিয়মের আলোচনা করি| আমি আপনার জীবনধারা অনুসরণ করি| 16 আমি আপনার বিধিসমুহ উপভোগ করি| আপনার বাক্য আমি ভুলবো না| 17 আপনার দাস, এই য়ে আমি আমার প্রতি ভাল ব্যবহার করুন, যাতে আমি বেঁচে থাকতে পারি এবং আপনার আজ্ঞাসমুহ মানতে পারি| 18 প্রভু আমার চোখ খুলে দিন| আমাকে আপনার শিক্ষাসমুহ দেখতে দিন এবং য়েসব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় আপনি করেছেন তা পাঠ করতে দিন| 19 প্রভু, এই দেশে আমি একজন বিদেশী| আমার কাছ থেকে আপনার শিক্ষাকে আড়াল করে রাখবেন না| 20 সব সময়েই আমি আপনার সিদ্ধান্তগুলো অনুধাবন করতে চাই| 21 প্রভু, আপনি অহঙ্কারী লোকদের সমালোচনা করেন| যারা আপনার আদেশগুলি মানতে অস্বীকার করে, তাদের ভাগ্য়ে মন্দ কিছু ঘটবে| 22 আমাকে লজ্জিত এবং বিব্রত করবেন না| আমি আপনার চুক্তি পালন করেছি| 23 নেতারা পর্য়ন্ত আমার সম্পর্কে মন্দ কথা বলেছে| কিন্তু প্রভু, আমি, আপনার দাস এবং আমি আপনার বিধিসমূহ অনুধাবন করি| 24 আপনার চুক্তি আমার নিকট বন্ধু| ওটি আমাকে ভালো উপদেশ দেয়| 25 আমি খুব শীঘ্রই মারা যাবো| প্রভু আপনি আজ্ঞা দিন এবং আমাকে বাঁচতে দিন| 26 আমার জীবন সম্পর্কে আমি আপনাকে বলেছি এবং আপনি আমায় উত্তর দিয়েছেন| এখন আমাকে আপনার বিধি সম্পর্কে শিক্ষা দিন| 27 প্রভু আপনার বিধি বুঝতে আমায় সাহায্য করুন| য়ে সব আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় আপনি করেছেন তা আমায় বলতে দিন| 28 আমি দুঃখী এবং শ্রান্ত| আপনি আজ্ঞা করুন এবং আমি আবার শক্তিশালী হয়ে উঠবো| 29 হে প্রভু, আমাকে ওই প্রবঞ্চনাময় জীবন থেকে দূরে রাখুন| আপনার শিক্ষামালা দিয়ে আমায় পরিচালিত করুন| 30 হে প্রভু, আমি আপনার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে স্থির করেছি| অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে আমি আপনার প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তসমূহ অনুধাবন করি| 31 হে প্রভু, আপনার চুক্তিতে আমি নিশ্চল থাকবো| অতএব আমাকে হতাশ করবেন না| 32 আমি আনন্দের সঙ্গে আপনার আজ্ঞাগুলো মানবো| প্রভু আপনার আজ্ঞাগুলো আমায় সুখী করে| 33 প্রভু, আমাকে আপনার বিধি শিক্ষা দিন, আমি সেগুলো মেনে চলবো| 34 আমাকে বুঝতে সাহায্য করুন, আমি আপনার শিক্ষামালাগুলো মানবো. আমি সম্পূর্ণভাবে সেগুলো পালন করবো| 35 হে প্রভু, আপনার আজ্ঞাসমুহের পথে আমায় পরিচালিত করুন| জীবনের সেই পথ আমি সত্যিই ভালোবাসি| 36 কি করে ধনী হওয়া যায় সেই চিন্তার থেকে, আপনার চুক্তি সম্পর্কে চিন্তা করতে আমায় সাহায্য করুন| 37 প্রভু, অসার বিষযের দিকে আমাকে তাকাতে দেবেন না| আপনার পথে বাঁচতে আমায় সাহায্য করুন| 38 আপনার দাসের জন্য য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পালন করুন, যার ফলে লোকরা আপনাকে শ্রদ্ধা করে| 39 য়ে লজ্জাকে আমি ভয় পাই তা আপনি নিরসন করুন| আপনার সিদ্ধান্তগুলি জ্ঞানগর্ভ এবং ভালো| 40 দেখুন আমি আপনার আজ্ঞাগুলো ভালোবাসি| আমার প্রতি ভালো ব্যবহার করুন এবং আমায় বাঁচতে দিন| 41 প্রভু, আমার প্রতি আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন| আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় রক্ষা করুন| 42 তাহলে য়ে লোকরা আমায় অপমান করেছে তাদের জন্য আমি একটা উত্তর খুঁজে পাবো| প্রভু আপনি যা বলেন প্রকৃতই আমি তা বিশ্বাস করি| 43 আপনার সত্য শিক্ষা সম্পর্কে আমাকে সর্বদাই বলতে দিন| প্রভু, আমি আপনার প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করি| 44 প্রভু, আমি চিরদিন আপনার শিক্ষামালাগুলো অনুসরণ করবো| 45 তাহলে আমি মুক্ত হবো| কেন? কারণ আপনার বিধি পালন করতে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করি| 46 এমন কি রাজাদের সামনেও আমি নির্ভয়ে আপনার নীতি কি বলে সে সম্বন্ধে বলব| 47 হে প্রভু, আপনার আজ্ঞাগুলি আমি ভালবাসি এবং ওগুলোতে আমি আনন্দ পাই| 48 প্রভু, আপনার আজ্ঞাগুলোর প্রশংসা করি| আমি সেগুলোকে ভালোবাসি এবং সেগুলো অনুধাবন করি| 49 প্রভু আমার প্রতি আপনার প্রতিশ্রুতির কথা মনে রাখবেন| সেই প্রতিশ্রুতি আমাকে আশা দেয়| 50 আমি দুর্দশাগ্রস্ত ছিলাম, আপনি আমায় স্বস্তি দিয়েছেন| আপনার বাক্য আমাকে পুর্নবার বাঁচতে দিয়েছে| 51 যারা ভাবে ওরা নিজেরা আমার চেয়ে ভালো, তারা আমাকে ক্রমাগত অপমান করেছে| কিন্তু আমি আপনার শিক্ষা অনুসরণ করা থেকে বিরত হই নি| 52 আমি সর্বদাই আপনার প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তসমূহ স্মরণ করি| প্রভু আপনার প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত আমায় সান্ত্বনা দেয়| 53 যখন দেখি, দুর্জন মানুষ আপনার শিক্ষা অনুসরণ করা থেকে বিরত হয়েছে, তখন আমি ক্রুদ্ধ হই| 54 আপনার বিধিগুলোই আমার গৃহেসঙ্গীত| 55 প্রভু, রাতে আমি আপনার নাম স্মরণ করি| 56 এটা সম্ভব হয়েছে তার কারণ, আমি যত্ন করে আপনার আজ্ঞা পালন করি| 57 প্রভু, আপনার আজ্ঞা পালন করাকেই আমার জীবনের কর্তব্য বলে স্থির করেছি| 58 প্রভু, আমি সম্পূর্ণভাবে আপনার ওপর নির্ভর করি| আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমার প্রতি সদয় হোন| 59 নিজের জীবন সম্পর্কে আমি খুব সতর্কভাবে চিন্তা করেছি এবং আমি আপনার চুক্তিতে ফিরে এসেছি| 60 কোনও বিলম্ব না করে আমি আপনার আজ্ঞাগুলি পালন করার জন্য তাড়াতাড়ি ফিরে এসেছি| 61 একদল মন্দ লোক আমার সম্পর্কে বাজে কথা বলেছে| কিন্তু প্রভু, আমি আপনার শিক্ষামালাকে ভুলিনি| 62 আপনার সুসিদ্ধান্তর জন্য, মাঝ রাতে উঠে আমি আপনাকে ধন্যবাদ দিই| 63 যারা আপনার উপাসনা করে আমি তাদের প্রত্যেকের কাছে বন্ধুস্বরূপ| 64 প্রভু, আপনার প্রকৃত প্রেম পৃথিবীকে পূর্ণ করে| আমায় আপনার বিধিগুলো শেখান| 65 হে প্রভু, আমার জন্য আপনার এই দাসের জন্য আপনি অনেক মঙ্গল করেছেন| যা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আপনি ঠিক তাই করেছেন| 66 প্রভু, প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমায় প্রজ্ঞা দিন| আমি আপনার আজ্ঞাসমুহ বিশ্বাস করি| 67 দুর্দশায় পড়ার আগে আমি অনেক ভুল কাজ করেছি| কিন্তু এখন আমি যত্ন করে আপনার আজ্ঞা পালন করি| 68 হে ঈশ্বর, আপনি মঙ্গলময় এবং আপনি ভালো কাজসমূহ করেন| আপনার বিধিগুলো আমায় শেখান| 69 লোকরা যারা ভাবে ওরা আমার চেয়ে ভালো তারা আমার সম্পর্কে বাজে কথা এবং মিথ্যা কথা বলেছে| কিন্তু সমস্ত অন্তর দিয়ে আমি আপনার আজ্ঞা পালন করে গেছি| 70 ঐ সব লোক খুবই নির্বোধ| কিন্তু আমি আপনার শিক্ষামালার অধ্যযন উপভোগ করেছি| 71 আমি য়ে ভুগেছিলাম তা ভালোই হয়েছিল, কারণ আমি আপনার বিধিগুলো শিখেছিলাম| 72 প্রভু, আপনার শিক্ষামালাগুলো আমার পক্ষে হিতকর| তারা 1,000 খণ্ড সোনা ও রূপোর চেয়েও উত্তম| 73 হে প্রভু, আপনি আমায় সৃষ্টি করেছেন এবং আপনি নিজের হাত দিয়ে আমায় অবলম্বন দিয়েছেন| আপনার আজ্ঞাগুলো বুঝতে এবং পালন করতে আমায় সাহায্য করুন| 74 প্রভু, আপনার অনুগামীরা আমায় দেখে এবং আমায় শ্রদ্ধা করে| ওরা খুশী, কারণ আপনার কথা আমি বিশ্বাস করি| 75 প্রভু, আমি জানি আপনার সিদ্ধান্তগুলো সুন্দর এবং আপনি য়ে আমায় শাস্তি দিয়েছিলেন তা আপনার পক্ষে যথায়থ ছিলো| 76 এখন আপনার প্রকৃত প্রেম দিয়ে আমায় আরাম দিন| আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায়, আপনার দাসকে আরাম দিন| 77 হে প্রভু, আমার ওপর আপনার করুণা বর্ষন করুন এবং আমায় বাঁচতে দিন| আমি আপনার শিক্ষামালাগুলো সত্যিই উপভোগ করি| 78 লোকে, যারা নিজেদের আমার চেয়ে উত্তম বলে মনে করে তারা আমার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলেছে| ঐ লোকগুলো য়েন লজ্জিত হয়| হে প্রভু, আপনার বিধিগুলো আমি অধ্যযন করি| 79 আশা করি আপনার অনুগামীরা আমার কাছে ফিরে আসবে এবং তারা আপনার চুক্তি সম্পর্কে জানবে| 80 প্রভু আপনার আজ্ঞাগুলো আমাকে নিখুঁতভাবে পালন করতে দিন, তাহলে আমি আর লজ্জিত হব না| 81 আমি প্রায় মৃত, আপনি আমায় রক্ষা করবেন এই প্রতীক্ষায আছি| কিন্তু হে প্রভু, আপনি যা বলেন তাতে আমি বিশ্বাস করি| 82 আপনি য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা দেখতে দেখতে আমার দুচোখ ক্লান্ত হয়ে গেছে| হে প্রভু, কখন আপনি আমাকে আরাম দেবেন? 83 যদি আমি কখনও আবর্জনাস্তুপে শূন্য মদের পিপার মত পরিত্যক্ত হই তখনও আমি আপনার বিধিগুলো ভুলবো না| 84 আমি কতদিনই বা বাঁচবো? হে প্রভু, যারা আমায় নির্য়াতিত করেছে, সেইসব লোকেদের আপনি কবে শাস্তি দেবেন? 85 কিছু উদ্ধত লোক তাদের মিথ্যার দ্বারা আমায় বিদ্ধ করেছে এবং তাও আপনার শিক্ষামালার বিরুদ্ধে| 86 প্রভু লোকে আপনার সব আজ্ঞা বিশ্বাস করতে পারে| আমায় নির্য়াতন করে ঐসব ভুল করেছিল| আমায় সাহায্য করুন| 87 ঐ লোকরা আমাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে| কিন্তু আমি আপনার আজ্ঞা পালন থেকে বিরত হই নি| 88 প্রভু আমার প্রতি আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন এবং আমায় বাঁচতে দিন| আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো| 89 হে প্রভু, আপনার বাণী চিরকাল থাকে| আপনার বাণী স্বর্গে চিরকালের জন্য থাকে| 90 চিরদিনের জন্যই আপনি বিশ্বস্ত| প্রভু, আপনি এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এখনও তা রয়েছে| 91 এখনও পর্য়ন্ত এই পৃথিবী য়ে অস্তিত্বশীল রয়েছে, তার কারণ আপনার বিধি| এই পৃথিবী আপনার বিধিকে একজন ক্রীতদাসের মতই মান্য করে| 92 আপনার শিক্ষামালাগুলো যদি আমার কাছে বন্ধুর মত না হত তাহলে আমার দুর্গতিই আমায় শেষ করে দিতো| 93 আমি আপনার আজ্ঞাগুলি কখনই ভুলবো না, কারণ সেগুলো আমাকে বাঁচতে দিয়েছে| 94 প্রভু, আমি আপনারই, তাই আমাকে রক্ষা করুন! কেন? কারণ আপনার আজ্ঞাগুলি মানতে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করি| 95 দুষ্ট লোকরা আমায় ধ্বংস করতে চেয়েছিলো| কিন্তু আপনার চুক্তি আমাকে জ্ঞানী করেছে| 96 আপনার বিধি ছাড়া সব কিছুরই সীমা আছে| 97 হে প্রভু, আমি আপনার শিক্ষামালাগুলো ভালোবাসি| সব সময়েই আমি সে সম্পর্কে কথা বলি| 98 প্রভু আপনার আজ্ঞাগুলো আমাকে আমার শত্রুদের থেকে জ্ঞানী করেছে| আপনার বিধি সব সময়েই আমার সঙ্গে থাকে| 99 আমার সকল শিক্ষকের চেয়ে আমি জ্ঞানী, কারণ আমি আপনার চুক্তি অধ্যয়ন করি| 100 সমস্ত প্রাচীন নেতাদের চেয়ে আমি বেশী বিজ্ঞ কারণ আমি আপনার সব আজ্ঞাগুলি মান্য করি| 101 আমি প্রতিটি মন্দ কাজ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলাম| তাই প্রভু, আপনি যা বলবেন, আমি তাই করতে পারি| 102 হে প্রভু, আপনি আমার শিক্ষক, তাই আমি আপনার বিধিসমূহ পালন করা থেকে বিরত হব না| 103 আপনার বাক্যগুলো আমার মুখে মধুর চেয়েও মিষ্টি লাগে| 104 আপনার শিক্ষামালা আমাকে জ্ঞানী করেছে, তাই ভ্রান্ত শিক্ষাকে আমি ঘৃণা করি| 105 প্রভু, আপনার বাক্যগুলো প্রদীপের মত আমার পথকে আলোকিত করে| 106 আপনার বিধিগুলো ভালো| আমি সেগুলো পালন করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এবং আমি আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবো| 107 প্রভু দীর্ঘদিন ধরে আমি ভুগেছি| দয়া করে আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমাকে আবার বাঁচতে দিন! 108 প্রভু আমার প্রশংসা গ্রহণ করুন এবং আপনার বিধিগুলো শেখান| 109 আমার জীবন সর্বদাই সঙ্কটাপন্ন| কিন্তু আমি আপনার শিক্ষাগুলো ভুলি নি| 110 দুষ্ট লোকরা আমায় ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিলো| কিন্তু আমি আপনার আজ্ঞাগুলি অমান্য করিনি| 111 প্রভু, আমি চিরদিন আপনার চুক্তি অনুসরণ করবো| এটা আমাকে ভীষণ খুশী করে| 112 আপনার বিধিগুলো পালন করার জন্য আমি অবশ্যই সর্বদা আপ্রাণ চেষ্টা করবো| 113 প্রভু, যারা আপনার প্রতি পুরোপুরি নিষ্ঠাবান নয় তাদের আমি ঘৃণা করি| কিন্তু আপনার শিক্ষামালাগুলো আমি ভালোবাসি| 114 আমায় রক্ষা করুন, আমায় আড়াল করে রাখুন| প্রভু, আপনি যা বলেন আমি সব বিশ্বাস করি| 115 প্রভু, দুষ্ট লোককে আমার কাছে আসতে দেবেন না| আমি অবশ্যই আমার ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করবো| 116 হে প্রভু, আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় সহায়তা দিন এবং আমি অবশ্যই বাঁচবো| আমি আপনাকে বিশ্বাস করি, আমাকে হতাশ করবেন না| 117 প্রভু, আমায় সাহায্য করুন, আমি রক্ষা পাবো| আমি সর্বদা আপনার আজ্ঞাগুলি অধ্যযন করবো| 118 হে প্রভু, যারা আপনার বিধি ভঙ্গ করে তাদের সবার কাছ থেকে আপনি সরে আসুন| কেন? কারণ যখন তারা আপনাকে অনুসরণ করার কথা বলেছিলো, তখন তারা মিথ্যা কথা বলেছিলো| 119 প্রভু, দুষ্ট লোকদের আবর্জনার মত আপনি পৃথিবীতে ছুঁড়ে ফেলে দিন| তাই আমি সর্বদাই আপনার চুক্তিকে ভালোবাসবো| 120 প্রভু, আমি আপনাকে ভয় করি| আপনার বিধিকে আমি ভয় ও শ্রদ্ধা করি| 121 যা সঠিক এবং ভালো আমি তাই করেছি| হে প্রভু, যারা আমায় উত্পীড়ন করে এমন লোকেদের হাতে আমায় সমর্পণ করবেন না| 122 আপনার দাস, আমার প্রতি ভাল ব্যবহার করবার প্রতিশ্রুতি করুন| আমি আপনার দাস| হে প্রভু, ঐ অহঙ্কারী লোকেদের আমাকে উত্পীড়ন করতে দেবেন না| 123 হে প্রভু, আপনার সাহায্যের আশায থেকে এবং আপনার সাহায্যের আশায থেকে এবং আপনার সুন্দর বাক্যের প্রত্যাশায আমার দু চোখ ক্লান্ত| 124 আমি আপনার দাস| আমার প্রতি আপনার প্রকৃত ভালোবাসা দেখান| আমাকে আপনার বিধিগুলো শেখান| 125 আমি আপনার দাস| আমি যাতে আপনার চুক্তি জানতে পারি, আমায় বুঝতে সাহায্য করুন| 126 প্রভু এখন আপনার কিছু করার সময় এসেছে| লোকরা আপনার বিধি ভঙ্গ করেছে| 127 প্রভু আপনার বিধিগুলোকে আমি সব থেকে খাঁটি সোনার চেয়েও ভালোবাসি| 128 আপনার সব আজ্ঞা আমি খুব যত্ন করে পালন করি| ভ্রান্ত শিক্ষাকে আমি ঘৃণা করি| 129 হে প্রভু, আপনার চুক্তি সত্যিই বিস্ময়কর| সেই জন্য আমি তা অনুসরণ করি| 130 যখন লোকেরা আপনার বানীসমুহ বুঝতে শুরু করে, তা একটি আলোর মত য়েটা তাদের সঠিক পথে বেঁচে থাকার পথ দেখায়| 131 হে প্রভু, আমি সত্যিই আপনার আজ্ঞাগুলো অধ্যযন করতে চাই| আমি সেই লোকের মত যার নিঃশ্বাস ভারী হয়েছে এবং অধৈর্য়্য় হয়ে প্রতীক্ষা করছে| 132 ঈশ্বর আমার দিকে দেখুন, আমার প্রতি সদয় হন, যারা আপনার নাম ভালোবাসে তাদের পক্ষে যা হিতকর তাই করুন| 133 প্রভু, আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় পরিচালিত করুন| আমার প্রতি ক্ষতিকর কিছু ঘটতে দেবেন না| 134 হে প্রভু, য়ে সব লোক আমায় আঘাত করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন এবং আমি আপনার আজ্ঞা মান্য করবো| 135 প্রভু, আপনার দাসকে গ্রহণ করুন এবং আমাকে আপনার বিধি শিক্ষা দিন| 136 লোকে আপনার শিক্ষামালাকে মান্য করে না| সেইজন্য আমি এত কেঁদেছি য়ে আমার চোখের জলে একটা নদী বইয়ে দিয়েছি| 137 হে প্রভু, আপনি মঙ্গলময় এবং আপনার বিধিগুলোও ন্যায্য ও সত্| 138 আপনার চুক্তিতে আপনি আমাদের জন্য ভালো এবং ন্যায্য বিধিসমুহ দিয়েছেন| আমরা সত্যি তাদের ওপর নির্ভর করতে পারি| 139 আমার প্রবল উদ্দীপনা আমায় ধ্বংস করে দিচ্ছে| আমার শত্রুরা আপনার আজ্ঞাগুলো ভুলে গেছে তাই আমি এত বিমর্ষ হয়ে রয়েছি| 140 আমরা য়ে আপনার বাক্যকে বিশ্বাস করতে পারি, আমাদের কাছে সেই প্রমাণ আছে এবং আমি তা ভালোবাসি| 141 আমি একজন তরুণ লোক এবং লোকে আমায় সম্মান করে না| কিন্তু আমি আপনার আজ্ঞা ভুলি নি| 142 আপনার ধার্ম্মিকতা চিরন্তন এবং আপনার শিক্ষাগুলিকে বিশ্বাস করা যায়| 143 আমার সমস্যা এবং দুঃসময় ছিল| কিন্তু আমি আপনার নির্দেশ উপভোগ করি| 144 আপনার চুক্তি চিরকালের জন্য ভালো ও ন্যায্য| আমাকে বুঝতে সাহায্য করুন যাতে আমি বাঁচতে পারি| 145 হে প্রভু, আমার সর্বান্তঃকরণ দিয়ে আমি আপনাকে ডাকছি, আমায় উত্তর দিন! আমি আপনার সমস্ত আজ্ঞাগুলি মান্য করব| 146 প্রভু, আমি আপনাকে ডাকছি| আমায় রক্ষা করুন! আমি আপনার চুক্তি পালন করবো| 147 আপনার কাছে প্রার্থনা করার জন্য আমি খুব সকালে উঠি| আপনি যা বলেন আমি তার ওপর নির্ভর করি| 148 আপনার কথা অধ্যযনের জন্য আমি অনেক রাত পর্য়ন্ত জেগে থাকি| 149 হে প্রভু, আপনি প্রেমময় এবং ন্যায়পরায়ণ| দয়া করে আমার কথা শুনুন এবং আমাকে বাঁচতে দিন| 150 দুষ্ট লোকরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে| ঐ লোকরা আপনার শিক্ষামালা অনুসরণ করে না| 151 প্রভু, আপনি আমার কাছেই আছেন এবং আপনার সব আজ্ঞাই বিশ্বাস করা চলে| 152 দীর্ঘদিন আগে আমি আপনার চুক্তি থেকে জেনেছি য়ে আপনার শিক্ষামালা হবে চিরন্তন| 153 প্রভু, আমার দুর্দশা দেখুন এবং আমায় উদ্ধার করুন| আমি আপনার শিক্ষামালাগুলো ভুলি নি| 154 হে প্রভু, আমার জন্য আপনি লড়াই করুন এবং আমায় রক্ষা করুন| আপনার প্রতিশ্রুতি অনুসারে আমায় বাঁচতে দিন| 155 দুষ্ট লোকরা জয় করতে পারবে না, কারণ তারা আপনার বিধি অনুসরণ করে না| 156 প্রভু, আপনি অত্যন্ত সদয়| য়েগুলো আপনি যথায়থ বলেন সেই কাজই করুন এবং আমায় বেঁচে থাকতে দিন| 157 আমার অনেক শত্রু আছে যারা আমাকে আঘাত করতে চায়, কিন্তু আমি আপনার চুক্তি অনুসরণ করা থেকে বিরত হই নি| 158 আমি ঐ বিশ্বাসঘাতকদের দেখি| প্রভু, তারা আপনার বাক্য অনুসরণ করে না| এবং আমি তা ঘৃণা করি| 159 দেখুন, আপনার আজ্ঞা পালনের জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি| প্রভু আপনার সব ভালোবাসা দিয়ে আমায় বেঁচে থাকতে দিন| 160 একেবারে শুরু থেকে আপনার প্রত্যেকটি বাক্যকেই নির্ভর করা যাবে| প্রভূ এবং আপনার সমস্ত ভালো ও ন্যায্য বিধিগুলো চিরদিনই থাকবে| 161 শক্তিশালী নেতারা বিনা কারণে আমায় আক্রমণ করেছিলো| কিন্তু আমি একমাত্র আপনার বিধিকে ভয় ও শ্রদ্ধা করেছিলাম| 162 হে প্রভু, আপনার বাক্যসমুহ আমাকে খুশী করে, একটি লোক প্রচুর সম্পদ খুঁজে পেলে য়েমন সুখী হয় তেমন সুখী| 163 আমি মিথ্যাকে ঘৃণা করি! আমি ওসব সহ্য করতে পারি নি| কিন্তু আমি আপনার শিক্ষামালাকে ভালোবাসি, প্রভু| 164 আপনার ভালো ও ন্যায্য বিধিগুলোর জন্য আমি দিনে সাতবার আপনার প্রশংসা করি| 165 যারা আপনার শিক্ষাকে ভালোবাসে সেই লোকেরা প্রকৃত শান্তি খুঁজে পাবে| কোন কিছুই ঐ লোকদের পতন ডেকে আনতে পারবে না| 166 রভু, আপনি আমায় রক্ষা করবেন আমি এই জন্য প্রতীক্ষা করছি| আমি আপনার আজ্ঞাগুলি পালন করেছি| 167 আমি আপনার চুক্তি অনুসরণ করেছি| প্রভু, আপনার বিধিগুলো আমি প্রচণ্ড ভালোবাসি| 168 আমি আপনার আজ্ঞা এবং আপনার চুক্তি অনুসরণ করেছি| প্রভু, আমি কি করেছি তার সবই আপনি জানেন| 169 প্রভু আমার আনন্দ গীত শুনুন| আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় জ্ঞানী করে দিন| 170 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন| আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় রক্ষা করুন| 171 আমায় আপনি আপনার বিধিগুলো শিখিয়েছেন| আপনার প্রশংসা আমার ওষ্ঠ থেকে উপছে পড়ে| 172 আপনার বাক্যে আমাকে সাড়া দিতে দিন এবং আমাকে আমার গান গাইতে দিন| হে প্রভু, আপনার সব বিধিই ভালো| 173 আমি স্থির করেছি আপনার আজ্ঞাই মান্য করবো| তাই এগিয়ে আসুন এবং আমায় সাহায্য করুন| 174 হে প্রভু, আমি চাই আপনি আমায় রক্ষা করুন| আপনার শিক্ষামালা আমাকে সুখী করে| 175 আমাকে বাঁচতে দিন এবং আপনার প্রশংসা করতে দিন প্রভু| আপনার বিধি য়েন আমায় সাহায্য করে| 176 হারিযে যাওয়া মেষের মত আমি ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম অতি দূরে| হে প্রভু, আমায় খুঁজতে আসুন| আমি আপনার দাস এবং আমি আপনার আজ্ঞাগুলি ভুলে যাই নি|
1 আমি সমস্যায় পড়েছিলাম| সাহায্যের জন্য আমি প্রভুকে ডেকেছিলাম এবং তিনি আমায় উদ্ধার করেছেন! 2 প্রভু, যারা আমার সম্পর্কে মিথ্যা বলেছে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| ওই লোকগুলো য়ে কথাগুলো বলেছে তা সত্য নয়| 3 মিথ্যাবাদীরা তোমরা কি জানো তোমরা কি পাবে? তোমরা কি জানো তোমরা কি লাভ করবে? 4 সৈনিকগণের তীক্ষ্ণ তীরসমুহ এবং জ্বলন্ত কযলা দিয়ে তোমাদের শাস্তি দেওয়া হবে| 5 তোমরা মিথ্যাবাদী, তোমাদের কাছে বাস করা মেশকে বাস করার মতন| এটা য়েন কেদরের তাবুঁতে বাস করার সমতুল্য| 6 যারা শান্তিকে ঘৃণা করে তেমন লোকদের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন বাস করেছি| 7 আমি বলেছি আমি শান্তি চাই, কিন্তু তারা য়ুদ্ধ চেয়েছে|
1 সাহায্যের জন্য আমি পাহাড়ের দিকে তাকিযে থাকি| কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমার সাহায্য কোথা থেকে আসবে? 2 আমার সাহায্য প্রভুর কাছ থেকে আসবে, য়ে প্রভু স্বর্গ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা| 3 ঈশ্বর তোমার পতন ঘটাতে দেবেন না| তোমার রক্ষাকর্তা ঘুমিযে পড়বেন না| 4 ইস্রায়েলের রক্ষাকর্তা কখনও ঘুমোন না| ঈশ্বর কখনও নিদ্রা যান না| 5 প্রভুই তোমার রক্ষাকর্তা| তাঁর মহত্ শক্তি দিয়ে তিনি তোমায় রক্ষা করেন| 6 দিনের বেলায় সূর্য় তোমায় আঘাত করতে পারে না| রাতের বেলায় চাঁদ তোমায় আঘাত করতে পারে না| 7 সকল বিপদ থেকে প্রভু তোমায় রক্ষা করবেন| প্রভু তোমার আত্মাকে রক্ষা করবেন| 8 যখনই তুমি আসবে এবং যাবে তখন প্রভু তোমায় সাহায্য করবেন| প্রভু তোমাকে এখন এবং চিরদিন সাহায্য করবেন!
1 আমি প্রচণ্ড খুশী হয়েছিলাম যখন লোকে বলেছিলো, “চল আমরা প্রভুর মন্দিরে যাই|” 2 আমরা এখানে জেরুশালেমের দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি| 3 এটা নতুন জেরুশালেম! একটা সংযুক্ত শহর হিসেবে এই শহর আবার গড়ে উঠেছে| 4 এটা সেই শহর যেখানে ঈশ্বরের লোকরা যায়| প্রভুর নামের প্রশংসা করার জন্য ইস্রায়েলের লোকরা সেখানে যায়| ওরা সবাই প্রভুর পরিবারগোষ্ঠীর লোক| 5 দায়ূদের পরিবারের রাজগণ তাঁদের বিচারের সিংহাসন ঐখানেই স্থাপন করেছেন| লোকজনের বিচার করার জন্য তাঁরা তাঁদের সিংহাসন ঐখানে স্থাপন করেছেন| 6 জেরুশালেমের শান্তির জন্য প্রার্থনা কর| “আমি আশা করি যারা আপনাকে ভালোবাসে তারা ওখানে গিয়ে শান্তি পাবে| আমি আশা করি আপনার প্রাচীরের ভিতরে শান্তি থাকবে| আপনার প্রাসাদগুলি নিরাপদ থাকুক|” 7 আমার প্রতিবেশী এবং ভাইদের ভালোর জন্য আমি প্রার্থনা করি, সেখানে শান্তি থাকবে| 8 আমাদের প্রভুর মন্দিরের কল্যানের জন্য, এই শহরের ভাল কিছু হোক এই মানসে আমি প্রার্থনা করি|
1 হে ঈশ্বর, আমি আমার নয়ন য়ুগল উর্দ্ধে তুলি এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করি| স্বর্গ আপনি রাজার মত বসেন| 2 দাসরা তাদের প্রযোজনীয জিনিসপত্রের জন্য তাদের ওপর নির্ভর করে| 3 সেই ভাবে আমরাও আমাদের প্রভু ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করি| প্রভু আমাদের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করবেন, এই প্রতীক্ষায় আমরা রয়েছি| 4 প্রভু, আমাদের প্রতি সদয় হোন, কারণ দীর্ঘদিন ধরে আমরা অপমানিত হয়ে এসেছি|ঐসব অলস এবং উদ্ধত লোকদের কাছ থেকে আমরা য়থেষ্ট অপমান ও নিন্দা পেয়েছি|
1 যদি প্রভু আমাদের দিকে না থাকতেন তাহলে কি হতে পারত? হে ই্রাযেল, আমাকে উত্তর দাও| 2 যখন লোকে আমাদের আক্রমণ করেছিলো, তখন যদি প্রভু আমাদের দিকে না থাকতেন তাহলে কি অবস্থা হত? 3 যখন আমাদের শত্রুরা আমাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছিলো, তখন হয়তো তারা আমাদের জ্য়ান্ত গিলে ফেলত| 4 আমাদের শত্রুরা আমাদের বন্যার মত ধুয়ে দিয়ে য়েতো, নদীর মত ডুবিয়ে দিয়ে য়েতো| 5 ঐ গর্বিত লোকরা মুখের ওপর ছাড়িযে যাওয়া জলের মত হত এবং আমাদের ডুবিয়ে দিত| 6 প্রভুর প্রশংসা কর! প্রভু আমাদের শত্রুদের হাতে, আমাদের ধরা পড়তে ও হত হতে দেন নি| 7 আমরা সেই পাখির মত, য়ে জালে জড়িয়ে পড়েও পালিয়ে গিয়েছিলো| জাল ছিঁড়ে গেল এবং আমরা পালিয়ে গেলাম| 8 প্রভুর কাছ থেকে আমাদের সাহায্য আসে| প্রভুই স্বর্গ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন|
1 য়ে লোকরা প্রভুতে আস্থা রাখে তারা সিয়োন পর্বতের মত হবে| তারা কখনই কাঁপবে না এবং তারা চিরদিন অব্যাহত থাকবে| 2 জেরুশালেমের চারদিকেই পর্বত রয়েছে এবং প্রভু তাঁর লোকদের চারদিকে রয়েছেন| তাঁর লোককে তিনি চিরদিন রক্ষা করবেন| 3 দুষ্ট লোকরা ভাল লোকদের দেশকে চিরদিন শাসন করবে না| যদি তাই হত তাহলে সত্ লোকরাও হয়তো মন্দ কাজ করা শুরু করতো| 4 হে প্রভু, ভাল ও সত্ লোকদের প্রতি ভালো ব্যবহার করুন| শুদ্ধ হৃদয়ের লোকদের প্রতি সদ্ব্য়বহার করুন| 5 মন্দ লোকরা মন্দ কাজকর্ম করে| প্রভু ঐসব মন্দ লোককে শাস্তি দেবেন| ইস্রায়েলের শান্তি বজায় থাকুক!
1 সিয়োন থেকে নির্বাসিত লোকদের প্রভু যখন ফিরিয়ে আনলেন, সেই সময় য়েন স্বপ্নের মতই ছিলো! 2 আমরা আনন্দে ভরে গিয়েছিলাম এবং আনন্দে গান গেয়েছিলাম! তখন অন্যান্য জাতিতে সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো, “ইস্রায়েলের লোকদের জন্য প্রভু বিস্ময়কর সব কাজ করেছেন|” 3 হ্যাঁ, প্রভু আমাদের জন্য চমত্কার জিনিসগুলি করেছেন এবং এই বিষযে আমরা খুশী| 4 হে প্রভু, মরুভূমিতে অতর্কিত বন্যার মত আমাদের ভাগ্যফিরিয়ে দিন| 5 কোন ব্যক্তি যখন বীজ বোনে তখন হয়তো সে বিমর্ষ থাকে| কিন্তু যখন সে ফসল সংগ্রহ করে তখন সে খুশী হয়| 6 যখন সে জমিতে বীজ বয়ে নিয়ে যায় তখন সে কাঁদতে পারে| কিন্তু যখন সে শস্য় ঘরে তোলে তখন সে খুশী হবে, আর উল্লাসে চিত্কার করবে!
1 যদি প্রভু বয়ং একটি বাড়ী না তৈরী করেন, তাহলে নির্মাণকারীরা বৃথাই তাদের সময় নষ্ট করছে| যদি প্রভু বয়ং শহরের নজরদারি না করেন তাহলে রক্ষী বৃথাই তার সময় নষ্ট করছে| 2 জীবিকার জন্য ভোরে ওঠা এবং অধিক রাত পর্য়ন্ত কাজ করা অবশ্যই সময়ের অপচয| ঈশ্বর যাদের ভালোবাসেন তাদের রাত্রে সুনিদ্রা দেন| 3 শিশুরা ঈশ্বরেরই উপহার| তারা হল মাযের গর্ভ থেকে পাওয়া পুরস্কার| 4 একজন যুবকের ছেলেরা একজন সৈনিকের তূণের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা তীরের মত| 5 য়ে লোক তার তূণকে সন্তান দ্বারা পূর্ণ করে সে ধন্য হবে|সেই লোক কখনই পরাজিত হবে না| নগরের ফটকগুলিতে, তার সন্তানরা তাকে তার শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করবে|
1 প্রভুর প্রত্যেকটি অনুগামীই সুখী| ঈশ্বর য়েভাবে চান তারা সেইভাবেই বাঁচে| 2 যার জন্য তুমি পরিশ্রম করছো তা তুমি উপভোগ করবে| তুমি সুখী হবে এবং তোমার ভাল হবে| 3 গৃহে তোমার স্ত্রী ফলদাযী দ্রাক্ষালতার মতই হবে| তোমার সন্তানরা তোমার পোঁতা জলপাই গাছের মতই তোমার টেবিলের চারপাশে থাকবে| 4 এই ভাবেই প্রভু তাঁর অনুগামীকে তাঁর প্রকৃত আশীর্বাদ দেবেন| 5 সিয়োন থেকে প্রভু তোমায় আশীর্বাদ করুন| সারা জীবন ধরে জেরুশালেমে তুমি তাঁর আশীর্বাদ উপভোগ কর| 6 তুমি য়েন তোমার নাতি-নাতনিদের দেখার জন্য দীর্ঘ জীবন লাভ কর| ইস্রায়েলের শান্তি বজায় থাকুক|
1 সারা জীবন ধরে আমার অনেক শত্রু ছিলো| হে ইস্রায়েল, আমাকে ঐ শত্রুদের সম্পর্কে বল| 2 সারা জীবন ধরে আমার অনেক শত্রু ছিলো| কিন্তু তারা কখনই জয়ী হয় নি| 3 আমার পিঠে গভীর ক্ষত না হওয়া পর্য়ন্ত তারা আমায় মেরেছিল| আমার দীর্ঘ গভীর ক্ষত হয়েছিল| 4 কিন্তু মঙ্গলময় প্রভু দড়ি কেটে দিয়েছিলেন| আমাকে ঐ মন্দ লোকদের হাত থেকে মুক্ত করেছিলেন| 5 যারা সিয়োনকে ঘৃণা করতো তারা পরাজিত হয়েছে| য়ুদ্ধ থামিযে দিয়ে ওরা দৌড়ে পালিয়ে গেছে| 6 ঐ লোকগুলো ছাদের ওপর জন্মান ঘাসের মত| সেই ঘাস বেড়ে ওঠার আগেই মারা যায়| 7 কজন শ্রমিক সেই ঘাস থেকে এক মুঠো দানাও পায় না| এক গাদা দানার জন্য সেখানে য়থেষ্ট ছিল না| 8 পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কোনও লোকে বলবে না “প্রভু তোমায় আশীর্বাদ করুন|” ওদের অভিনন্দন জানিয়ে লোকে বলবে না, “প্রভুর নামে আমরা তোমায় আশীর্বাদ করি|”
1 হে প্রভু, আমি গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছি, তাই সাহায্যের জন্য আমি আপনাকে ডাকছি| 2 হে আমার প্রভু, আমার কথা শুনুন| সাহায্যের জন্য আমার প্রার্থনা শুনুন| 3 হে প্রভু, আপনি যদি লোকদের তাদের পাপ সমূহের জন্য শাস্তি দেন তাহলে কেউই আর জীবিত থাকবে না| 4 প্রভু আপনার লোকদের ক্ষমা করে দিন| তাহলে আপনার উপাসনা করার মত লোক থাকবে| 5 প্রভু আমায় সাহায্য করবেন আমি এই প্রতীক্ষায রয়েছি| আমার আত্মা তাঁর জন্য প্রতীক্ষা করে| প্রভু যা বলেন আমি তা বিশ্বাস করি| 6 আমি আমার প্রভুর প্রতীক্ষায রয়েছি, য়েমন একজন প্রহরী সকাল হওয়ার প্রতীক্ষায থাকে| 7 হে ইস্রায়েল, প্রভুকে বিশ্বাস কর| প্রকৃত প্রেম একমাত্র প্রভুতেই খুঁজে পাওয়া যায়| প্রভু আমাদের বারে বারে রক্ষা করেন এবং প্রভু ইস্রায়েলকে তাদের সব পাপের জন্যই ক্ষমা করবেন|
1 হে প্রভু, আমি অহঙ্কারী নই| আমি কোন গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি হবার ভান করি না| এমন কি আমি বিরাট কিছু করবার চেষ্টাও করি না| আমি নিজেকে এমন কোন ব্যাপারে জড়াই না, যা খুব বড় ও আমার অসাধ্য| 2 আমি শান্ত, আমার আত্মা শান্ত| 3 মাযের কোলে পরিতৃপ্ত শিশুর মত আমার আত্মা শান্তিতে মগ্ন|ইস্রায়েল (তুমি) প্রভুকে বিশ্বাস কর| তাঁকে এখন বিশ্বাস কর, তাঁকে চিরদিন বিশ্বাস কর!
1 প্রভু স্মরণে রাখবেন দায়ূদ কেমন কষ্ট পেয়েছিলেন| 2 দায়ূদ প্রভুর কাছে একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| দায়ূদ যাকোবের শক্তিমান ঈশ্বরের কাছে একটি বিশেষ প্রতিশ্রুতি করেছিলেন| 3 দায়ূদ বলেছিলেন, “আমি আমার বাড়িতে যাবো না, আমি আমার বিছানায় শোব না| 4 আমি ঘুমোতে যাব না| আমি আমার চোখকে বিশ্রাম দেবো না| 5 য়তক্ষণ পর্য়ন্ত না আমি যাকোবের শক্তিমান ‘একজনের’ জন্য একটি বাসস্থান খুঁজে পাই ততক্ষণ পর্য়ন্ত আমি ওই সবের কোন কিছুই করবো না!” 6 আমরা ইফ্রাথায সে সম্পর্কে শুনেছি| কিরিযত্ য়িযারিমে আমরা সাক্ষ্য সিন্দুক খুঁজে পেয়েছি| 7 চল আমরা পবিত্র তাঁবুতে যাই| চল আমরা সেই চৌকিতে উপাসনা করি যেখানে প্রভু তাঁর পা রাখেন| 8 হে প্রভু, আপনি এবং আপনার শক্তির সিন্দুকউত্থান করুন এবং বিশ্রাম স্থানে ফিরে আসুন| 9 হে প্রভু, আপনার যাজকরা ধার্ম্মিকতায সজ্জিত| আপনার নিষ্ঠাবান অনুগামীরা প্রচণ্ড সুখী| 10 আপনার সেবক দায়ূদের ভালোর জন্য, আপনার মনোনীত রাজাকে বাতিল করবেন না| 11 প্রভু দায়ূদে কাছে একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন| প্রভু দায়ূদের প্রতি বিশ্বস্ত থাকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন| প্রভু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন য়ে, দায়ূদের পরিবার থেকেই রাজারা আসবে| 12 প্রভু বলেছেন, “দায়ূদ, যদি তোমার সন্তানরা আমার চুক্তি এবং য়ে বিধিসমূহ আমি তাদের শিখিয়েছি তা মানে তাহলে সর্বদাই তোমার পরিবারের কোন একজন, তোমার নিজের বংশধর, রাজা হবে|” 13 তাঁর মন্দিরের স্থান হিসেবে প্রভু সিয়োনকে মনোনীত করেছেন| তাঁর গৃহ (মন্দির) হিসেবে তিনি সেই স্থানই চেয়েছিলেন| 14 প্রভু বলেছিলেন, “চিরদিনের জন্য এটাই আমার স্থান হবে| আমার থাকার স্থান হিসেবে আমি এই জায়গাকে মনোনীত করেছি| 15 প্রচুর খাদ্য দিয়ে আমি এই শহরকে আশীর্বাদ করবো| এমনকি দরিদ্র মানুষরাও প্রচুর খাদ্য পাবে| 16 আমি যাজকদের পরিত্রাণ দিয়ে সজ্জিত করবো| আমার অনুগামীরা সুখী হবে| 17 এই স্থানে আমি দায়ূদকে শক্তিশালী করবো| আমার দ্বারা মনোনীত রাজার জন্য আমি একটি প্রদীপ দেব| 18 দায়ূদের শত্রুদের আমি লজ্জায ঢেকে দেবো| কিন্তু দায়ূদের রাজ্যকে আমি বাড়িযে তুলবো|”
1 যখন ভাইরা সঙঘবদ্ধ হয়ে একত্রিত বসে তখন সেটা কত সুন্দর ও মনোরম| 2 এটা য়েন সেই সুগন্ধি তেলের মত য়ে তেল হারোণের মাথায় ঢালা হয়েছে এবং তার মাথা থেকে মুখ ও দাড়ি বেযে তার বিশেষ বস্ত্রে গড়িযে পড়েছে| 3 এটা হর্ম্মোণ পর্বত থেকে আগত মৃদু বৃষ্টির মত য়েটা সিয়োন পর্বতের ওপর ঝরে পড়ছে|কারণ সিয়োনে প্রভু তাঁর আশীর্বাদ দিয়েছিলেন, অনন্তকালের জীবনের আশীর্বাদ|
1 তোমরা প্রভুর দাসরা যারা সারা রাত ধরে মন্দিরে তাঁর সেবা কর! 2 সেবকগণ দুহাত তুলে তোমরা প্রভুর প্রশংসা কর| 3 প্রভু সিয়োন থেকে তোমাদের আশীর্বাদ করুন| প্রভু আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন|
1 প্রভুর প্রশংসা কর! প্রভু নামের প্রশংসা কর! হে প্রভুর দাসগণ, তাঁর প্রশংসা কর! 2 তোমরা যারা প্রভুর মন্দিরে দাঁড়িয়ে আছো, আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরের আঙিনায, তারা তাঁর প্রশংসা কর| 3 প্রভুর প্রশংসা কর, কারণ তিনি ভালো| তাঁর নামের প্রশংসা কর, কারণ তা অত্যন্ত মনোরম| 4 প্রভু যাকোবকে মনোনীত করেছেন| ইস্রায়েল ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত| 5 আমি জানি প্রভু মহান! আমাদের প্রভু সব দেবতাদের চেয়ে মহান! 6 স্বর্গে এবং পৃথিবীতে, সমুদ্র বা গভীর মহাসাগরে ঈশ্বর যা চান তাই করতে পারেন| 7 ঈশ্বরই, সারা পৃথিবীতে মেঘ সৃষ্টি করেন| ঈশ্বরই বৃষ্টি এবং বিদ্য়ুত্ সৃষ্টি করেন এবং ঈশ্বরই বাতাস সৃষ্টি করেন| 8 ঈশ্বর, মিশরবাসীদের প্রথম সন্তান এবং সেখানকার পশুদের প্রথম শাবককে ধ্বংস করেছিলেন| 9 ঈশ্বর, মিশরে অনেক চমত্কার ও অলৌকিক কাজ করেছিলেন| এমনকি ফরৌণ এবং তার আধিকারিকদের জন্যও ঈশ্বর এই সব ঘটনা ঘটিযেছিলেন| 10 ঈশ্বর অনেক জাতিকে পরাজিত করেছিলেন| অনেক শক্তিশালী রাজাকে ঈশ্বর হত্যা করেছিলেন| 11 ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে ঈশ্বর পরাজিত করেছিলেন| বাশনের রাজা ওগকে ঈশ্বর পরাজিত করেছিলেন| কনানের সব রাজ্যগুলিকে ঈশ্বর পরাস্ত করেছিলেন| 12 এবং তাদের ভূখণ্ডগুলি প্রভু ইস্রায়েলকে দিয়েছেন| তাদের ভূখণ্ড প্রভু তাঁর লোকদের দিয়েছেন| 13 প্রভু আপনার নাম চিরদিন ধরে বিখ্য়াত থাকবে! প্রভু মানুষ আপনাকে চিরকাল মনে রাখবে| 14 প্রভু জাতিগুলিকে শাস্তি দিয়েছিলেন| কিন্তু প্রভু তাঁর সেবকদের প্রতি সদয় ছিলেন| 15 অন্যান্য লোকদের দেবতারা শুধুই সোনা ও রূপোর মূর্ত্তি| ওদের দেবতারা নিছকই মানুষের হাতের তৈরী মূর্ত্তি মাত্র| 16 ওই মূর্ত্তিগুলোর মুখ ছিলো কিন্তু কথা বলতে পারতো না| ওই মূর্ত্তিগুলোর চোখ ছিলো কিন্তু দেখতে পারতো না| 17 ওই মূর্ত্তিগুলোর কান ছিলো কিন্তু শুনতে পেতো না| ওই মূর্ত্তিগূলোর নাক ছিলো কিন্তু ঘ্রাণ নিতে পারতো না| 18 য়ে লোকগুলো ওই মূর্ত্তিগুলো তৈরী করেছে তারাও ওই রকম হয়ে যাবে! কেন? কারণ ওরা বিশ্বাস করে য়ে মূর্ত্তিগুলোই ওদের সাহায্য করবে| 19 হে ইস্রায়েলের পরিবারবর্গ, প্রভুর প্রশংসা কর! হে হারোণের পরিবার, প্রভুর প্রশংসা কর! 20 হে লেবীয় পরিবার প্রভুর প্রশংসা কর! হে প্রভুর অনুগামীরা, প্রভুর প্রশংসা কর! 21 সিয়োন থেকে, তাঁর গৃহ জেরুশালেম থেকে, প্রভু প্রশংসা প্রাপ্ত হন| প্রভুর প্রশংসা কর!
1 প্রভুর প্রশংসা কর কারণ তিনিই মঙ্গলকর| তাঁর প্রকৃত প্রেম বিরাজমান থাকে| 2 যিনি সব দেবতাদের দেবতা, সেই ঈশ্বরের প্রশংসা কর! তাঁর প্রকৃত প্রেম চিরবিরাজমান থাকে| 3 সব প্রভুদের প্রভুকে প্রশংসা কর! তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 4 ঈশ্বরের প্রশংসা কর যিনি একাই বিস্ময়কর সব কাজ করেন! তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 5 ঈশ্বরের প্রশংসা কর যিনি প্রজ্ঞা দিয়ে আকাশ সৃষ্টি করেছেন! তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 6 শুষ্ক ভূখণ্ডকে তিনি সাগরে স্থাপন করেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 7 ঈশ্বর মহান আলোগুলো সৃষ্টি করেছেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 8 দিত্থকে শাসন করার জন্য ঈশ্বর সূর্য়্য় সৃষ্টি করেছেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 9 রাত্রিকে শাসন করার জন্য ঈশ্বর চাঁদ এবং তারা সৃষ্টি করেছেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 10 মিশরের প্রথম জাত মানুষ এবং প্রাণীকে ঈশ্বর হত্যা করেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 11 ঈশ্বর ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 12 ঈশ্বর তাঁর বিপুল শক্তি ও ক্ষমতা প্রদর্শন করে ছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগে ভাগ করেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 14 ঈশ্বর লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে ইস্রায়েলকে পরিচালিত করেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম অনন্তকাল অব্যাহত থাকে| 15 ফরৌণ এবং সৈন্যবাহিনীকে ঈশ্বর লোহিত সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 16 ঈশ্বর তাঁর লোকদের মরুভূমির মধ্যে দিয়ে পথ দেখিয়েছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 17 ঈশ্বর শক্তিশালী রাজাদের পরাজিত করেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 18 ঈশ্বর বলবান রাজাদের পরাজিত করেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 19 ঈশ্বর ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে পরাজিত করেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 20 ঈশ্বর বাশনের রাজা ওগকে পরাজিত করেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 21 ঈশ্বর তাদের ভূখণ্ড ইস্রায়েলকে দিয়েছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চিরবিরাজমান থাকে| 22 ঈশ্বর সেই ভূখণ্ড ইস্রায়েলকে উপহারস্বরূপ দিয়েছেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 23 যখন আমরা পরাজিত হয়েছিলাম, তখন ঈশ্বর আমাদের স্মরণে রেখেছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 24 ঈশ্বর আমাদের শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 25 ঈশ্বর প্রত্যেকটি লোককে আহার দেন| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| 26 স্বর্গের ঈশ্বরের প্রশংসা কর| তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে|
1 বাবিলের নদীগুলির তীরে আমরা বসেছিলাম এবং যখন সিয়োনের কথা মনে পড়েছিল, তখন আমরা কেঁদেছিলাম| 2 আমরা আমাদের বীণাগুলি নিকটবর্তী বাইশী গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিলাম| 3 বাবিলের লোকরা যারা আমাদের অধিকার করেছিল, তারা আমাদের গান গাইতে বলেছিলো| ওরা আমাদের আনন্দের গান গাইতে বলেছিলো| ওরা আমাদের সিয়োন সম্পর্কে গান গাইতে বলেছিলো| 4 কিন্তু বিদেশ বিভুঁইতে আমরা প্রভুর গান গাইতে পারি না! 5 জেরুশালেম, কখনও যদি আমি তোমাকে ভুলে যাই, তাহলে য়েন আমি বাজনা বাজাতে ভুলে যাই| 6 জেরুশালেম কখনও যদি আমি তোমাকে ভুলে যাই, তাহলে য়েন আবার আমি গান না গাই| আমি প্রতিজ্ঞা করছি আমি তোমাকে কখনও ভুলবো না| 7 আমি প্রতিজ্ঞা করছি য়ে, জেরুশালেম সর্বদাই আমার শ্রেষ্ঠতম আনন্দ হবে| হে প্রভু, জেরুশালেমের পতনের দিন ইদোমীয়রা কি করেছিল মনে রাখবেন| তারা চিত্কার করে বলেছিল, “ভেঙ্গে ফেলো, আমূল ভেঙে ফেলো!” 8 বাবিল তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে! সেই লোকই ধন্য য়ে তোমার প্রাপ্য শাস্তি তোমাকে দেয়| সেই মানুষের প্রশংসা হোক য়ে লোক, তোমাকে সেই ভাবে আঘাত করে, য়েমন তুমি আমাদের আঘাত করেছিলে| 9 সেই লোক ধন্য য়ে তোমাদের শিশুদের আঁকড়ে ধরে আর তাদের পাথরে পিষে ফেলে|
1 ঈশ্বর, আমার সর্বান্তঃকরণ দিয়ে আমি আপনার প্রশংসা করি| সব দেবতার সামনে আমি আপনার গান গাইবো| 2 ঈশ্বর, আপনার পবিত্র মন্দিরে আমি মাথা নত করে প্রণাম করি| আমি আপনার নাম প্রেম এবং নিষ্ঠার প্রশংসা করি| কারণ আপনার প্রতিশ্রুতি আপনার নামকে পৃথিবীর সব কিছুর উর্দ্ধে প্রতিষ্ঠা করেছে| 3 ঈশ্বর, আমি আপনার সাহায্য চেয়েছিলাম| আপনি আমায় সাড়া দিয়েছেন! আপনি আমায় শক্তি দিয়েছেন| 4 প্রভু, পৃথিবীর প্রত্যেকটা রাজা যখন শুনবে আপনি কি বলেন তখন তারা আপনার প্রশংসা করবে| 5 তারা প্রভুর পথের বন্দনা গান গাইবে কারণ প্রভুর মহিমা অত্যন্ত মহান| 6 যদিও ঈশ্বর মহিমান্বিত তথাপি তিনি নম্র ব্যক্তিদের সম্বন্ধে যত্ন নেন| আত্মগর্বী লোকরা কি করে তা ঈশ্বর জানেন, কিন্তু তিনি তাদের থেকে দূরে থাকেন| 7 হে ঈশ্বর, আমি সংকটে পড়েছি, আমায় বাঁচিয়ে রাখবেন| শত্রুরা যদি আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়, ওদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করবেন| 8 প্রভু, আপনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই সব জিনিস আমায় দিন| প্রভু, আপনার প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে| প্রভু, আপনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন| তাই আমাদের ছেড়ে যাবেন না|
1 প্রভু আপনি আমায় পরীক্ষা করেছেন| আমার সম্পর্কে আপনি সবই জানেন| 2 আমি কখন বসি এবং উঠি আপনি তাও জানেন| বহু দূর থেকেই আপনি আমার চিন্তা-ভাবনা জানতে পারেন| 3 প্রভু, আমি কোথায যাই এবং আমি কোথায শুই তাও আপনি জানেন| আমি যা করি তার সবই আপনি জানেন| 4 প্রভু, আমি কিছু বলার আগেই আপনি বুঝে যান আমি কি বলতে চাই| 5 প্রভু, আপনি আমার সামনে পিছনে আমার চারদিকে রয়েছেন| নম্রভাবে আমার ওপর আপনার হাত রাখুন| 6 আপনি যা জানেন তাতে আমি বিস্মযাভিভূত| এটা আমার বোধের অতীত| 7 যেখানে যেখানে আমি যাই সর্বত্রই আপনার আত্মা বিরাজ করে| হে প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে পালাতে পারি না| 8 হে প্রভু, যদি আমি স্বর্গলোকে যাই, আপনি সেখানে রয়েছেন| যদি আমি পাতালে যাই, আপনি সেখানেও রয়েছেন| 9 প্রভু, যেখানে সূর্য়ের উদয হয় সেই পূর্বদিকে যদি আমি যাই আপনি সেখানে রয়েছেন| যদি আমি পশ্চিমের সমুদ্রে যাই সেখানেও আপনি রয়েছেন| 10 সেখানেও আপনার ডান হাত আমায় ধরে থাকে এবং আমায় পরিচালিত করে| 11 প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে চাইতে পারি এবং বলতে পারি, “দিনের আলো এখন রাত্রিতে বদলে গেছে| নিশ্চয়ই অন্ধকার আমাকে লুকিয়ে দেবে|” 12 কিন্তু অন্ধকার আপনার কাছে অন্ধকার নয়| প্রভু, রাত আপনার কাছে দিনের মতই উজ্জ্বল| 13 প্রভু আপনি আমার সারা দেহ সৃষ্টি করেছেন| যখন আমি মাতৃদেহে ছিলাম তখনও আপনি আমার সম্পর্কে সব জানতেন| 14 প্রভু, আমি আপনার প্রশংসা করি! আপনি অত্যন্ত বিস্ময়-বিহ্বলভাবে ও চমত্কারভাবে আমাকে সৃষ্টি করেছেন| আমি খুব ভালোভাবে জানি য়ে আপনি যা কিছু করেছেন সবই চমত্কার| 15 আপনি আমার সম্পর্কে সব কিছু জানেন| মাযের দেহে লুকিয়ে যখন আমার শরীর বড় হচ্ছিলো তখন আপনি আমার অস্থি মজ্জাকে পর্য়ন্ত লক্ষ্য করেছিলেন| 16 আমার প্রত্যেকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আপনি বাড়তে দেখেছিলেন| আপনার গ্রন্থে আপনি সে সম্বন্ধে লিখে রেখেছেন| প্রত্যেকদিন আপনি আমার ওপর লক্ষ্য রেখেছেন| তার মধ্যে একটাও হারিযে যায় নি| 17 আপনার চিন্তাগুলো আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ| ঈশ্বর আপনি কত জানেন! 18 যদি আমি আপনার চিন্তাগুলোকে গুনতে পারতাম, তারা সংখ্যায় সমস্ত বালুকণার চেয়ে বেশী হতো এবং যখন আমি শেষ করতাম, তখনও আমি আপনার সঙ্গে থাকতাম| 19 ঈশ্বর, দুষ্ট লোকদের শেষ করে দিন| ওই ঘাতকদের আমার থেকে দূরে সরিয়ে নিন| 20 ওই মন্দ লোকরা আপনার সম্পর্কে মন্দ কথা বলে| ওরা আপনার নাম সম্পর্কে বাজে কথা বলে| 21 প্রভু যারা আপনাকে ঘৃণা করে আমি তাদের ঘৃণা করি| যারা আপনার বিরুদ্ধে যায় তাদের আমি ঘৃণা করি| 22 আমি তাদের পুরোপুরি ঘৃণা করি! আপনার শত্রুরা আমারও শত্রু| 23 হে প্রভু, আমার দিকে দেখুন এবং আমার অন্তরকে জানুন| আমায় পরীক্ষা করুন এবং আমার চিন্তাগুলো জানুন| 24 দেখুন কোন মন্দ চিন্তা আমার মনে আছে কিনা এবং আমাকে সেই পথে পরিচালিত করুন য়ে পথ চির বিরাজমান থাকে|
1 প্রভু মন্দ লোকদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| নৃশংস লোকের থেকে আমায় রক্ষা করুন| 2 ওই লোকরা মন্দ কাজ করার পরিকল্পনা করে| ওই লোকরা সর্বদাই লড়াই করে| 3 ওদের জিভ বিষধর সাপের মত| ওদের জিভের নীচে সাপের মতই বিষ থাকে| 4 প্রভু, দুষ্ট লোকদের থেকে আমায় রক্ষা করুন| নৃশংস লোকদের থেকে আমায় রক্ষা করুন| ওই লোকরা আমায় ফাঁদে ফেলবার জন্য আমায় তাড়া করে| 5 ওই উদ্ধত লোকরা আমার জন্য ফাঁদ পেতেছে| আমাকে ধরার জন্য ওরা জাল বিছিযেছে| ওরা আমার পথে ফাঁদ পেতেছে| 6 প্রভু, আপনিই আমার ঈশ্বর| প্রভু আমার প্রার্থনা শুনুন| 7 প্রভু, আপনি আমার শক্তিশালী প্রভু| আপনি আমার পরিত্রাতা| আপনি আমার শিরস্ত্রাণের মত য়েটা যুদ্ধের সময় আমার মাথাকে রক্ষা করে| ওদের পরিকল্পনাকে সফল হতে দেবেন না| তাহলে ওরা নিজেদের ছাড়িযে যাবে| 8 প্রভু, ঐ লোকরা দুষ্ট| ওরা যা চায় তা ওদের পেতে দেবেন না| ওদের পরিকল্পনাকে সফল হতে দেবেন না| নতুবা ওরা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে| 9 হে প্রভু, আমার শত্রুকে জয়ী হতে দেবেন না| ওরা সবসময়েই মন্দ ফন্দি আঁটে| ওদের খারাপ ফন্দিগুলো য়েন ওদের ক্ষেত্রেই ঘটে| 10 ওদের মাথায় জ্বলন্ত কযলা ঢেলে দিন| আমার শত্রুদের আগুনে ফেলে দিন| ওদের কবরের মধ্যে নিক্ষেপ করুন যাতে ওরা আর ওখান থেকে উঠতে না পারে| 11 প্রভু, ওই মিথ্যাবাদীদের বাঁচতে দেবেন না| ওই মন্দ লোকদের প্রতি য়েন মন্দ ঘটনাই ঘটে| 12 আমি জানি প্রভু ন্যায়সঙ্গভাবে দরিদ্রদের বিচার করেন| ঈশ্বর সহায়হীত্থকে সাহায্য করেন| 13 হে প্রভু, সত্ ও ভাল লোকরা আপনার নামের প্রশংসা করবে| সত্ লোকরা আপনার উপাসনা করবে|
1 প্রভু, সাহায্যের জন্য আমি আপনাকে ডাকছি| যখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি তখন আমার প্রার্থনা শুনুন| শীঘ্রই আমাকে সাহায্য করুন! 2 প্রভু আমার প্রার্থনা গ্রহণ করুন| এটা য়েন জ্বলন্ত ধূপের সুগন্ধির মত হয়| এটা য়েন সান্ধ্য়কালীন উত্সর্গের মত হয়| 3 প্রভু, আমি যা বলি সে সম্বন্ধে য়েন সাবধান হই| আমি যা বলি তাতেই আমাকে আনন্দিত হতে দিন| আমাকে খারাপ কাজের বাধ্য করতে দেবেন না| 4 মন্দ কাজ করার আকাঙ্খা আমার মধ্যে থাকতে দেবেন না| মন্দ লোকরা যা করে আনন্দ পায় আমাকে তার সামিল হতে দেবেন না| 5 একজন সত্ লোক আমার ভুল সংশোধন করিয়ে দিতে পারে| সেটা তারই দয়া| আপনার অনুগামীরা আমার সমালোচনা করতে পারে| সেটা ওদের পক্ষে ভালো কাজ হবে| তাও আমি মেনে নেবো| কিন্তু মন্দ লোকরা য়ে সব মন্দ কাজ করে তার বিরুদ্ধে আমি সর্বদাই প্রার্থনা করবো| 6 ওদের শাসকদের শাস্তি পেতে দিন| তখন লোকে জানতে পারবে আমি সত্য বলেছিলাম| 7 লোকে মাটি খোঁড়ে, জমি চাষ করে এবং সার ছড়িয়ে দেয়| একই রকমভাবে ওদের কবরের চারদিকে আমাদের হাড় ছড়ানো থাকবে| 8 হে আমার প্রভু, আমি সাহায্যের জন্য আপনার দিকে চেয়ে থাকি| আমি আপনাকে বিশ্বাস করি| আমাকে মরে য়েতে দেবেন না| 9 মন্দ লোকরা আমার জন্য ফাঁদ পেতেছে| আমাকে ওদের ফাঁদে পড়তে দেবেন না| ওরা য়েন ওদের ফাঁদে আমার ধরতে না পারে| 10 দুষ্ট লোকরা নিজেরাই য়েন নিজেদের ফাঁদে পড়ে| এবং আমি য়েন অনাহত ভাবে চলে য়েতে পারি|
1 আমি সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকবো| আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবো| 2 আমি প্রভুকে আমার সব সংকটের কথা বলবো| আমি প্রভুকে আমার অসুবিধার কথা বলবো| 3 আমার শত্রুরা আমার জন্য একটা ফাঁদ পেতেছে| আমি সমর্পণ করতে প্রস্তুত| কিন্তু প্রভু জানেন আমার মধ্যে কি হচ্ছে| 4 আমি চারদিকে দেখি, কিন্তু আমি আমার কোন বন্ধু দেখি না| আমার পালানোর কোন জায়গা নেই| কেউ আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করে না| 5 তাই আমি প্রভুর কাছে উচ্চস্বরে সাহায্য প্রার্থনা করেছিলাম| প্রভু, আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল| প্রভু আপনিই আমায় বাঁচতে দিতে পারেন| 6 হে প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন কারণ আমি অসহায়| যারা আমায় তাড়া করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| ওই লোকগুলো আমার পক্ষে প্রচণ্ড শক্তিশালী| 7 আমাকে এই ফাঁদ এড়িয়ে য়েতে সাহায্য করুন যাতে আমি আপনার নামের প্রশংসা করতে পারি| এবং ভালো লোকরা এসে আমার সঙ্গে উদয়াপন করবে, কারণ আপনি আমায় প্রযত্নে রেখেছিলেন|
1 প্রভু আমার প্রার্থনা শুনুন| আমার প্রার্থনা শুনুন এবং তারপর আমার প্রার্থনার উত্তর দিন| আমাকে দেখান য়ে সত্যিই আপনি কত মঙ্গলকর ও বিশ্বস্ত| 2 আমি আপনার দাস, আমাকে বিচার করবেন না| কারণ কোন জীবিত ব্যক্তি আপনার সামনে কখনই নির্দোষ বলে বিবেচিত হতে পারে না| সারা জীবন ধরে আমি কি কখনও নিস্পাপ বলে বিবেচিত হব| 3 কিন্তু শত্রুরা আমায় তাড়া করেছে| তারা আমার জীবনকে ভেঙ্গে গুঁড়িযে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে| দীর্ঘদিন আগে মরে যাওয়া লোকের মত ওরা আমাকে অন্ধকার কবরে ঠেলে দিচ্ছে| 4 আমি ত্যাগ করতে প্রস্তুত| আমি আমার সাহস হারিযে ফেলেছি| 5 কিন্তু দীর্ঘকাল আগে কি ঘটেছিলো আমার তা মনে আছে| বহু বিষয়, য়েগুলো আপনি করেছিলেন তার সম্বন্ধে আমি ভাবি| আপনার বিপুল ক্ষমতা দিয়ে আপনি যা করেছিলেন সে সম্পর্কে আমি বলে থাকি| 6 প্রভু, আমার দু হাত তুলে আপনার কাছে প্রার্থনা করি, য়েমন করে শুকনো জমি বৃষ্টির প্রতীক্ষা করে তেমন করে আমি আপনার সাহায্যের প্রতীক্ষা করি| 7 শীঘ্রই আমাকে উত্তর দিন প্রভু| আমি সাহস হারিযেছি| আমার থেকে বিমুখ হবেন না| কবরে শুয়ে থাকা মৃত লোকের মত আমাকে মৃত হতে দেবেন না| 8 প্রভু আজকের সকালে আমাকে আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন| আমি আপনাতে বিশ্বাস রাখি| আমার যা করণীয তা আমায় দেখান| আমি আমার জীবন আপনার হাতে সমর্পণ করছি! 9 প্রভু আমি নিরাপত্তার জন্য আপনার কাছে এসেছি| শত্রুদের থেকে আমায় রক্ষা করুন| 10 আমাকে দিয়ে আপনি কি করাতে চান তা আমায় দেখান| আপনি আমার ঈশ্বর| আপনার মহত্ উদ্দীপনা দিয়ে আমায় সঠিক পথে এগিয়ে দিন| 11 প্রভু আমাকে বাঁচতে দিন, তাহলে লোকে আপনার নামের প্রশংসা করবে| আপনি য়ে প্রকৃতই মঙ্গলকর তা আমায় দেখান এবং শত্রুদের থেকে আমায় রক্ষা করুন| 12 হে প্রভু, আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন এবং যারা আমায় মেরে ফেলতে চাইছে সেই শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| তাদের পরাজিত করুন এবং তাদের ধ্বংস করুন|
1 প্রভু আমার শিলা, আমার নিরাপদ স্থান| প্রভুর প্রশংসা কর! প্রভু আমার হাতগুলোকে যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ দেন| তিনি আমার আঙ্গুলগুলিকে সংগ্রামের জন্য প্রশিক্ষণ দেন| 2 প্রভু আমায় ভালোবাসেন এবং রক্ষা করেন| উঁচু পাহাড়ে প্রভু আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল, প্রভুই আমায় উদ্ধার করেন| প্রভুই আমার ঢাল| আমি তাঁকে বিশ্বাস করি| আমার লোকদের তিনি আমার অধীনস্থ করেন| 3 প্রভু, লোকরা কেন আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ? কেন আপনি আমাদের সম্বন্ধে যত্ন নেন| 4 একজন লোকের জীবন বাতাসের ফুত্কারের মত| একজন মানুষের জীবন চলমান ছায়ার মত| 5 প্রভু, আকাশ বিদীর্ণ করে নেমে আসুন| পর্বত স্পর্শ করুন ,পর্বত থেকে ধোঁযা বেরিয়ে আসবে| 6 হে প্রভু, আপনি বিদ্য়ুতের চমক পাঠান এবং আমার শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করুন| আপনার “তীরগুলি” নিক্ষেপ করুন এবং তাদের পালাতে বাধ্য করুন| 7 প্রভু, স্বর্গ থেকে নেমে আসুন এবং আমায় রক্ষা করুন! শত্রুর সাগরে আমাকে ডুবে য়েতে দেবেন না| এই সব বিদেশীদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| 8 এই শত্রুরা মিথ্যাবাদী| ওরা এমন কথা বলে যা সত্য নয়| 9 প্রভু য়ে সব বিস্ময়কর কাজ আপনি করেন, সে সম্পর্কে আমি একটা নতুন গান গাইবো| দশতারা বীণা বাজিয়ে আমি আপনার প্রশংসা করবো| 10 রাজাদের তাঁদের য়ুদ্ধসমূহে জয়ী হতে প্রভু সাহায্য করেন| প্রভু তাঁর দাস দায়ূদকে শত্রুর তরবারি থেকে রক্ষা করেছেন| 11 এই বিদেশীর হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন| এইসব শত্রুরা মিথ্যাবাদী| ওরা এমন কথা বলে যা সত্য নয়| 12 আমাদের তরুণ ছেলেরা শক্ত গাছের মত| আমাদের কন্যারা প্রাসাদের অনুপম কারুকার্য়ের মত| 13 আমাদের গোলাগুলি সব রকম ফসলে পূর্ণ| আমাদের চারণক্ষেত্রে হাজারে হাজারে মেষ রয়েছে| 14 আমাদের সৈন্যরা সুরক্ষিত| কোন শত্রু জোর করে এখানে প্রবেশ করতে চাইছে না| আমরাও য়ুদ্ধ করতে যাচ্ছি না| রাস্তাগুলোতে লোকজন চিত্কার করছে না| 15 এই রকম সময় লোকজন ভীষণ খুশী| প্রভু যদি বয়ং তাদের ঈশ্বর হন লোকজন ভীষণ খুশী হয়|
1 হে আমার ঈশ্বর এবং রাজা, আমি আপনার প্রশংসা করি| চিরদিনের জন্য এবং অনন্তকালের জন্য আমি আপনার নামকে আশীর্বাদ করি| 2 প্রতিদিন আমি আপনার প্রশংসা করি| চিরদিনের জন্য আমি আপনার নামের প্রশংসা করি| 3 প্রভু মহান| লোকজন ভীষণভাবে তাঁর প্রশংসা করে| য়ে সব মহত্ কাজ তিনি করেন, তা আমরা গুনতে পারি না| 4 প্রভু, আপনি যা করেন তার জন্য লোকজন চিরদিন আপনার প্রশংসা করবে| আপনি য়ে মহত্ কাজ করেন তার সম্পর্কে তারা বলবে| 5 আপনার মহত্ব এবং মহিমা দুইই চমত্কার| আপনার বিস্ময়কর কাজ সম্পর্কে আমি বলবো| 6 প্রভু, য়ে সব বিস্ময়কর কাজ আপনি করেন সে সম্পর্কে লোকে বলবে| আপনি য়ে সব মহত্ কাজ করেন সে সম্পর্কে আমি বলবো| 7 আপনি য়েসব ভালো কাজ করেন সে সম্পর্কে লোকরা বলবে| লোকে আপনার ধার্ম্মিকতার গান গাইবে| 8 প্রভু দয়াময় এবং ক্ষমাশীল| প্রভু স্থিতধী এবং প্রেমে পরিপূর্ণ| 9 প্রতিটি লোকের জন্যই প্রভু মঙ্গলকর| প্রভু যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার প্রতিটি বস্তুর প্রতি তিনি করুণা প্রদর্শন করেন| 10 প্রভু, আপনি যা করেন, তাই আপনাকে প্রশংসা এনে দেয়| আপনার অনুগামীরা আপনার প্রশংসা করে| 11 তারা বলে আপনার রাজত্ব কত মহত্| তারা আপনার মহত্ব সম্বন্ধে বলে| 12 তাই হে প্রভু, আপনি য়ে সব মহত্ কাজ করেন অন্য লোকেরা তা জানতে পারে এবং তারা জানতে পারে আপনার রাজত্ব কত বিশাল এবং গৌরবময়| 13 প্রভু, আপনার রাজত্ব চির বিরাজমান থাকবে| আপনি চিরদিনই রাজত্ব করবেন| 14 পতিত মানুষকে প্রভু উদ্ধার করেন| যারা সমস্যায় পড়ে প্রভু তাদের সাহায্য করেন| 15 হে প্রভু, সমস্ত জীবিত প্রাণী তাদের খাদ্যের জন্য আপনার দিকে চেয়ে থাকে| এবং যথাসময়ে আপনি তাদের খাদ্য দেন| 16 হে প্রভু, আপনি আপনার হাত খুলে দিন এবং জীবিত প্রাণীদের যা কিছু প্রযোজন তা দিন| 17 প্রভু যা কিছু করেন তা সবই ভালো| যা কিছু তিনি করেন তা দেখিয়ে দেয় তিনি কত মঙ্গলকর এবং বিশ্বস্ত| 18 যারা তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করে, প্রভু ওই সব লোকের কাছেই থাকেন| তিনি তাঁর উপাসকদের অন্তরঙ্গ| 19 তাঁর অনুগামীরা যা চান প্রভু তাই করেন| তিনি ওদের প্রার্থনার উত্তর দেন এবং ওদের রক্ষা করেন| 20 যারা তাঁকে ভালোবাসে, প্রভু তাদের রক্ষা করেন| কিন্তু মন্দ লোকদের প্রভু বিনাশ করেন| 21 আমি প্রভুর প্রশংসা করবো! সব লোক য়েন চিরদিন ধরে তাঁর পবিত্র নামের প্রশংসা করে|
1 প্রভুর প্রশংসা কর! হে আমার আত্মা, প্রভুর প্রশংসা কর! 2 আমার সারাজীবন ধরে আমি প্রভুর প্রশংসা করবো| সারা জীবন আমি তাঁর প্রশংসা করবো| 3 সাহায্যের জন্য তোমরা নেতাদের ওপর নির্ভর কর না| লোকেদের বিশ্বাস কর না| কেন? কারণ লোকে তোমাকে বাঁচাতে পারে না| 4 মানুষ মরে কবরে চলে যায়| তখন তাদের সাহায্যের সব পরিকল্পনা শেষ হয়ে যায়| 5 কিন্তু যারা ঈশ্বরের কাছ থেকে সাহায্য চায় তারা ভীষণ সুখী হয়| ওরা ওদের প্রভু ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে| 6 প্রভুই স্বর্গ এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন| প্রভু সমুদ্র এবং তার ভেতরের সব জিনিস সৃষ্টি করেছেন| প্রভু তাদের চিরদিন রক্ষা করবেন| 7 নিস্পেষিত লোকদের জন্য প্রভু ঠিক কাজ করেন| ঈশ্বর ক্ষুধার্ত মানুষকে আহার দেন| কারাগারে বদ্ধ মানুষকে প্রভুই মুক্ত করেন| 8 প্রভু অন্ধকে পুনরায দৃষ্টি দেন| যারা সমস্যায় পড়েছে, প্রভু তাদের সাহায্য করেন| য়ে সব লোকরা ভাল তাদের প্রভু ভালোবাসেন| 9 আমাদের দেশে য়ে সব বিদেশীরা বাস করে তাদের প্রভু রক্ষা করেন| প্রভুই বিধবা ও অনাথদের দেখাশোনা করেন কিন্তু মন্দ লোকদের প্রভু বিনাশ করেন| 10 প্রভু চিরদিনই শাসন করবেন! সিয়োন, তোমার ঈশ্বর চিরদিনই রাজত্ব করবেন! প্রভুর প্রশংসা কর!
1 প্রভুর প্রশংসা কর কারণ তিনি মঙ্গলকর| আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রশংসার গান কর| তাঁর প্রশংসা করা ভালো এবং মনোরম| 2 প্রভু জেরুশালেম শহরটি বানিয়েছেন| য়ে সব ইস্রায়েলীয়কে বন্দী হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো ঈশ্বর তাদের ফিরিয়ে এনেছিলেন| 3 ঈশ্বর তাদের ভগ্নহৃদয় সারিযে তুলেছিলেন এবং তাদের ক্ষতের শুশ্রূষা করেছিলেন| 4 ঈশ্বর তারা গণনা করেন এবং প্রত্যেকটিকে তাদের নাম ধরে ডাকেন| 5 আমাদের প্রভু মহান| তিনি প্রচণ্ড শক্তিশালী| তিনি য়ে কত জানেন তার কোন সীমা নেই| 6 বিনযী লোকদের ঈশ্বর সাহায্য করেন| কিন্তু মন্দ লোকদের তিনি হতবিহ্বল করে দেন| 7 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও| বীণা বাজিয়ে তাঁর প্রশংসা কর| 8 ঈশ্বর আকাশকে মেঘে ঢেকে দেন| ঈশ্বরই বৃষ্টি আনেন| ঈশ্বরই পাহাড়ে ঘাসের জন্ম দেন| 9 ঈশ্বর প্রাণীকে খাদ্য দেন| ঈশ্বর নবীন পাখীদের আহার দেন| 10 মানবিক ইচ্ছাসমূহ ঈশ্বরের মধ্যে থাকে না| যুদ্ধের শক্তিশালী ঘোড়াগুলো তিনি চান না| 11 যারা তাঁর উপাসনা করে তাদের নিয়েই প্রভু সুখী| যারা তাঁর প্রকৃত প্রেমে বিশ্বাস রাখে ঈশ্বর তাদের নিয়েই খুশী হন| 12 জেরুশালেম, প্রভুর প্রশংসা কর! সিয়োন, তোমার প্রভুর প্রশংসা কর! 13 জেরুশালেম, তোমার ফটকগুলিকে ঈশ্বর দৃঢ় করেছেন এবং তোমার শহরের লোকজনকে ঈশ্বর আশীর্বাদ করেন| 14 ঈশ্বর তোমাদের রাজ্য়ে শান্তি এনেছেন| সেজন্যই যুদ্ধের সময় শত্রুরা তোমাদের ফসল নিয়ে যায় নি এবং তোমাদের আহারের জন্য প্রচুর শস্য় আছে| 15 ঈশ্বর পৃথিবীকে একটা আদেশ দিলে সে তত্ক্ষণাত্ তা পালন করে| 16 য়তক্ষণ পর্য়ন্ত মাটি পশমের মত সাদা না হয়, ঈশ্বর ততক্ষণ তুষার পাত করেন| ঈশ্বরই শিলাবৃষ্টিকে বাতাসের মধ্যে ধূলোর মত উড়িযে নিয়ে যান| 17 ঈশ্বর আকাশ থেকে শিলাবৃষ্টি বর্ষণ করান| তাঁর পাঠানো ঠাণ্ডা কেউ সহ্য করতে পারে না| য়ে মেঘ তিনি পাঠান কোন লোকই তাকে দাঁড় করাতে পারে না| 18 তারপর ঈশ্বর আর একটা আদেশ দেন এবং আবার উষ্ণ বাতাস বইতে শুরু করে| বরফ গলতে শুরু করে এবং জল প্রবাহিত হয়| 19 ঈশ্বর যাকোবকে তাঁর নির্দেশ দিয়েছিলেন| ঈশ্বর তাঁর নিয়ম ও বিধিগুলো ইস্রায়েলকে দিয়েছিলেন| 20 অন্য কোন জাতির জন্য ঈশ্বর এসব করেন নি| তাঁর বিধিগুলো ঈশ্বর অন্য লোকদের শেখান নি| প্রভুর প্রশংসা কর|
1 প্রভুর প্রশংসা কর! হে দূতগণ স্বর্গ থেকে প্রভুর প্রশংসা কর! 2 তোমরা সব দূতগণ, প্রভুর প্রশংসা কর! তাঁর সেনাবাহিনীরপ্রভুর প্রশংসা কর! 3 চন্দ্র ও সূর্য় প্রভুর প্রশংসা কর| আকাশের তারকাগণ এবং আলো তাঁর প্রশংসা কর! 4 স্বর্গের উচ্চতম স্থানে প্রভুর প্রশংসা কর! হে আকাশের উর্দ্ধের জলরাশি, তাঁর প্রশংসা কর! 5 প্রভুর নামের প্রশংসা কর| কারণ ঈশ্বর আদেশ দিয়েছিলেন এবং তাই প্রতিটি বস্তু অস্তিত্ব পেয়েছে! 6 চিরদিন অব্যাহত থাকবার জন্য ঈশ্বর এই সব সৃষ্টি করেছেন| ঈশ্বর তাদের অনন্ত বিধিসমুহ দিয়েছেন| 7 পৃথিবীর সব কিছুই প্রভুর প্রশংসা করে! মহাসাগরের বড় বড় সামুদ্রিক প্রাণীরা, প্রভুর প্রশংসা কর! 8 আগুন ও শিলাবৃষ্টি, তুষার এবং ধোঁযা, এবং ঝোড়ো বাতাস সবই ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন| 9 ঈশ্বর পাহাড় ও পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন, ফলের বৃক্ষসমুহ ও এরস গাছ সৃষ্টি করেছেন| 10 সমস্ত প্রাণী ও গবাদি পশু এবং সরীসৃপ ও পাখি সৃষ্টি করেছেন| 11 ঈশ্বরই পৃথিবীতে রাজাগণকে এবং জাতিগণকে সৃষ্টি করেছেন| ঈশ্বরই নেতাদের ও বিচারকদের সৃষ্টি করেছেন| 12 ঈশ্বরই তরুণ তরুণীদের সৃষ্টি করেছেন| ঈশ্বরই বৃদ্ধ ও যুবকদের সৃষ্টি করেছেন| 13 প্রভুর নামের প্রশংসা কর| চিরদিনের জন্য তাঁর নামের সম্মান কর! পৃথিবী এবং স্বর্গে যা কিছু রয়েছে, তারা সবাই প্রভুর প্রশংসা কর! 14 ঈশ্বর তাঁর মানুষদের শক্তিশালী করবেন| লোক ঈশ্বরের অনুগামীদের প্রশংসা করবে| লোকে ইস্রায়েলের প্রশংসা করবে| ওরা সেই লোক যাদের জন্য ঈশ্বর লড়াই করেন, প্রভুর প্রশংসা কর!
1 প্রভুর প্রশংসা কর! প্রভু নতুন যা করেছেন তার জন্য একটা নতুন গান গাও! যেখানে তাঁর অনুগামীরা একসঙ্গে জড় হয়, সেই সমাজে তাঁর প্রশংসা কর| 2 ইস্রায়েলকে তাদের স্রষ্টাকে নিয়ে আনন্দ করতে দাও| সিয়োনের লোককে তাদের রাজাকে নিয়ে আনন্দ করতে দাও| 3 লোকেরা বীণা ও খঞ্জনী বাজাক এবং নাচতে নাচতে ঈশ্বরের প্রশংসা করুক! 4 ঈশ্বর তাঁর লোকদের প্রতি প্রসন্ন| ঈশ্বর তাঁর বিনম্র লোকদের জন্য এক বিস্ময়কর জিনিস করেছেন| তিনি তাদের রক্ষা করেছেন! 5 হে ঈশ্বর অনুগামীরা, তোমাদের জয়কে উপভোগ কর! বিছানায় যাওয়ার পরে পর্য়ন্ত সুখী হও| 6 লোকজনকে চিত্কার করে প্রভুর প্রশংসা করতে দাও এবং তাদের হাতে তরবারি ধরতে দাও| 7 ওরা ওদের শত্রুদের শাস্তি দিতে যাক| ওরা ওই সব লোকদের শাস্তি দিতে যাক| 8 ঈশ্বরের লোকরা ওদের রাজাদের এবং বড় বড় নেতাদের লোহার শিকল দিয়ে শৃঙ্খলিত করবে| 9 ঈশ্বরের নির্দেশ মতই ঈশ্বরের লোকরা ওদের শাস্তি দেবে| ঈশ্বরের সমস্ত অনুগামীরা, তাঁকে সম্মান জানাও| প্রভুর প্রশংসা কর!
1 প্রভুর প্রশংসা কর! ঈশ্বরের মন্দিরে তাঁর প্রশংসা কর! স্বর্গে তাঁর ক্ষমতার প্রশংসা কর! 2 ঈশ্বর য়ে সব মহত্ কাজ করেন, তার জন্য তাঁর প্রশংসা কর! তাঁর সকল মহত্বের জন্য তাঁর প্রশংসা কর! 3 শিঙা ও বাঁশির সাহায্যে তাঁর প্রশংসা কর! বীণা ও লীরা বাজিয়ে তাঁর প্রশংসা কর! 4 খঞ্জনি বাজিয়ে নাচ করতে করতে তাঁর প্রশংসা কর! তন্ত্রবাদ্যযন্ত্র ও বাঁশি বাজিয়ে তাঁর প্রশংসা কর! 5 করতালের উচ্চ ধ্বনিতে তাঁর প্রশংসা কর! কান ফাটানো করতালের শব্দে তাঁর প্রশংসা কর! 6 প্রত্যেকটি জীব তোমরা তাঁর প্রশংসা কর! প্রভুর প্রশংসা কর!
1 এই নীতি-কথাগুলি দায়ূদের পুত্র শলোমনের জ্ঞানগর্ভ শিক্ষামালা| শলোমন ছিলেন ইস্রায়েলের রাজা| 2 মানুষকে জ্ঞানী করে তোলা এবং তাদের সঠিক পথের সন্ধান দেওয়াই এই কথাগুলির উদ্দেশ্য| এম্প কথাগুলির মাধ্যমে লোকে জ্ঞানগর্ভ শিক্ষামালা অনুধাবন করতে পারবে| 3 এই কথাগুলি লোকদের সঠিক পথ বুঝতে সাহায্য করে| মানুষ সততা, ন্যায়পরাযণতা ও ধার্মিকতার পথ শিখবে| 4 যাঁরা জ্ঞান অর্জন করতে চান সেই লোকদের এই কথাগুলি শিক্ষা প্রদান করবে| এই জ্ঞান কি করে প্রয়োগ করতে হবে এই শিক্ষামালা যুবসম্প্রদাযকে তাও শিখিযে দেবে| 5 এমনকি জ্ঞানী ব্যক্তিদেরও এই নীতি-কথাগুলি শোনা উচিত্| এই শিক্ষামালার মাধ্যমে তাঁদের জ্ঞানের ব্যপ্তি বৃদ্ধি পাবে, তাঁরা আরো পণ্ডিত হয়ে উঠবেন| য়ে সব লোক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে দক্ষ তাঁরা আরও বেশী বোধ লাভ করবেন| 6 তখন ঐসব লোকরা জ্ঞানপূর্ণ রচনাবলী এবং কাহিনীসমূহ যাদের মধ্যে রূপক অর্থ রযেছে সেগুলো বুঝতে পারবেন| তাঁরা জ্ঞানবানদের কথাগুলি অনুধাবন করতে সফল হবেন| 7 প্রভুকে মান্য করা এবং শ্রদ্ধা করাই হল মানুষের সর্বপ্রথম কর্তব্য| এটা তাদের প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করে| কিন্তু শয়তান বোকারা অনুশাসন এবং যথার্থ জ্ঞানকে ঘৃণা করে| 8 আমার পুত্র,তোমার পিতা যখন তোমাকে সংশোধন করেন তখন তাঁর উপদেশ শোন| তোমার মায়ের পরামর্শও অবহেলা কোরো না| 9 তোমার পিতামাতার দেওয়া শিক্ষাসমূহ তোমার মাথার ওপর একটি সুন্দর মালার মত অথবা একটি কন্ঠহারের মতো য়েটা তোমাকে দেখতে আকর্ষক করে তোলে| 10 পুত্র আমার, পাপীরা তোমাকেও পাপের পথে টানতে চেষ্টা করবে| ঐ পাপীদের কথায় কর্ণপাত কোরো না| 11 ঐসব পাপী লোকরা হয়তো তোমাকে বলবে, “আমাদের দলে এসো! আমরা একটি লোককে হঠাত্ আক্রমণ ও হত্যা করেত যাচ্ছি| আমরা এক জন নিরীহ লোককে আক্রমণ করব| 12 আমরা তাকে হত্যা করব| আমরা ঐ লোকটিকে মৃত্যুস্থলে পাঠিয়ে দেব| আমরা তাকে কবরে পাঠাব| 13 আমরা সর্বপ্রকার বহুমূল্য সামগ্রী চুরি করব| আমরা সেই চুরি করা ধনসম্পত্তি দিয়ে আমাদের গৃহ পরিপূর্ণ করব| 14 তাই আমাদের সঙ্গে চলে এসো, আমাদের সাহায্য কর| ঐ লুন্ঠিত ধন আমরা সবাই ভাগাভাগি করে নেব!” 15 পুত্র, ঐ পাপীদের অনুসরণ কোরো না| তাদের পাপের পথে এক পাও অগ্রসর হয়ো না| 16 ঐসব খারাপ লোকরা পাপ কাজ করতে সর্বদাই প্রস্তুত| তারা সর্বদা লোকদের হত্যা করতে চায়| 17 লোকরা পাখী ধরতে জাল পাতে| কিন্তু জাল যখন পাতা হচ্ছে তখন যদি পাখীরা দেখে ফেলে তাহলে কোন লাভ হবে না| 18 তাই পাখীরা কাউকে হত্যা করার আগে তার জন্য লুকিয়ে প্রতীক্ষা করে| কিন্তু ওরা নিজেদের পাতা ফাঁদে পা দিয়েই ধ্বংস হবে! 19 লোভী লোকরা তাদের নিজেদের কুকর্মের জন্য তাদের জীবন হারায| 20 শোন! প্রজ্ঞা মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছে| সে (প্রজ্ঞা) পথেঘাটে এবং জনবহুল বাজারে চিত্কার করছে| 21 সে জনবহুল রাস্তার বাঁকগুলিতে চিত্কার করছে| সে শহরের ফটকগুলির কাছে লোকদের উদ্দেশ্য করে চেঁচাচ্ছে| প্রজ্ঞা বলছে: 22 “ওহে বোকা লোকরা, আর কতদিন ধরে তোমরা তোমাদের নির্বোধের মত জীবনযাপন করাকে ভালবেসে চলবে? আরও কতকাল প্রজ্ঞাকেউপহাস করা উপভোগ করবে? হীনবুদ্ধিরা কতদিন জ্ঞানকে ঘৃণা করবে? 23 আমার শিক্ষামালার প্রতি তোমাদের যথাযোগ্য মনোয়োগ দেওয়া উচিত্ ছিল| আমি তোমাদের আমার জ্ঞান দিয়ে দিতাম| আমি আমার ভাবনাগূলোকে তোমাদের জ্ঞাত করতাম| 24 “কিন্তু তোমরা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিলে| আমি তোমাদের সাহায্য করতে চেয়েছিলাম| আমি তোমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িযে দিয়েছিলাম - কিন্তু তোমরা আমার সাহায্য গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলে| 25 তোমরা আমার তিরস্কার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলে| তোমরা আমার সঙ্গে এক মত হতে সম্মত হলে না| 26 অতএব, তোমরা যখন সংকটে পড়বে তখন আমি তোমাদের নিয়ে পরিহাস করব| তোমাদের কাছে যখন সন্ত্রাস আসবে তখন আমি তোমাদের উপহাস করব| 27 সন্ত্রাস ভয়ঙ্কর ঝড়ের মত তোমাদের অতর্কিতে গ্রাস করবে| সংকটসমূহ প্রবল বাতাসের মত তোমাদের ওপর আঘাত হানবে| তোমরা নিদারুণ যন্ত্রণা ও দুঃখে পড়বে| 28 “যখনই এই ধরণের বিপর্য়য ঘটবে তোমরা আমার সাহায্য চাইবে| কিন্তু আমি তোমাদের সাহায্য করব না| তোমরা আমাকে খুঁজবে কিন্তু পাবে না| 29 আমি তোমাদের সাহায্য করব না| কারণ তোমরা জ্ঞানকে অস্বীকার করেছো| তোমরা প্রভুকে ভয় ও ভক্তি করতে রাজি হও নি| 30 তোমরা আমার উপদেশে কর্ণপাত কর নি| আমি যখন তোমাদের সঠিক পথের সন্ধান দিতে চেয়েছি, তোমরা রাজি হও নি| 31 তোমরা তোমাদের ইচ্ছে মত বাঁচতে চেয়েছ| তোমরা নিজেদের মতই অনুসরণ করেছ| তাই তোমাদের কৃতকর্মের ফল তোমরাই ভোগ করবে| 32 “নির্বোধরা ধ্বংস হয় কারণ তারা জ্ঞানের পথ অনুসরণ করতে অস্বীকার করে| তারা বিপথে চালিত হয় এবং নিজেদের পতন ডেকে আনে| 33 কিন্তু য়ে ব্যক্তি আমাকে মেনে চলে সে নিরাপদে বাস করবে| সে সর্বদা স্বাচ্ছন্দে থাকবে, সে কখনও কোন মন্দকে ভয় করবে না|”
1 পুত্র আমার, আমি যা বলি তা গ্রহণ কর| আমার আদেশগুলি মনে রেখো| 2 প্রজ্ঞার কথা শোন এবং সর্বতোভাবে বোঝার চেষ্টা কর| 3 জ্ঞানকে ডাকো| বোধকে চিত্কার করে ডাকো| 4 রূপোর মত প্রজ্ঞার অন্বেষণ কর| গুপ্তধনের মত তাঁকে খুঁজে বেড়াও| 5 তুমি যদি এগুলি কর, তাহলে তুমি প্রভুকে শ্রদ্ধা করতে শিখবে| তুমি ঈশ্বরের জ্ঞান খুঁজে পাবে| 6 প্রভু আমাদের প্রজ্ঞা দান করেন| জ্ঞান এবং বোধশক্তি তাঁরই মুখ থেকে নিঃসৃত হয়| 7 তিনি সত্ ও ধার্মিক ব্যক্তিদের রক্ষা করেন| 8 যারা অন্যদের প্রতি ভদ্র আচরণ করে তাদেরও তিনি রক্ষা করেন| জ্ঞান ও বোধ তাঁর মুখ থেকে নিঃসৃত হয়| 9 তাই, প্রভু তোমাকে তাঁর জ্ঞান প্রদান করবেন| তখন তুমি ভালো, ন্যায় ও সঠিক বলতে কি বোঝায তা বুঝতে সক্ষম হবে| 10 প্রজ্ঞা তোমার হৃদয়ে প্রবেশ করবে এবং তোমার আত্মা জ্ঞানের মহিমায সুখী হবে| 11 প্রজ্ঞা তোমাকে রক্ষা করবে এবং বিবেচনাশক্তি তোমাকে পাহারা দেবে| 12 প্রজ্ঞা এবং বোধ তোমাকে পাপী লোকদের মত ভুল পথে চলার হাত থেকে নিবৃত্ত করবে| যারা এমন কথা বলে যা ধ্বংসের কারণ তাদের কাছ থেকে জ্ঞান তোমাকে রক্ষা করবে| 13 এই পাপী লোকরা সততার পথ ত্যাগ করেছে এবং এখন অন্ধকারের (পাপ) পথ অনুসরণ করছে| 14 তারা পাপ কাজ করতেই ভালোবাসে এবং কুপথকে উপভোগ করে| 15 ঐ পাপীদের বিশ্বাস করা যায় না| তারা মিথ্যা কথা বলে এবং লোকদের প্রতারণা করে| কিন্তু তোমার জ্ঞান ও বোধ তোমাকে সব সময় এই সব জিনিসগুলি থেকে দূরে রাখবে| 16 প্রজ্ঞা তোমাকে ঐ অপরিচিতা রমণী থেকে দূরে রাখবে| সেই বিজাতীযা, য়ে চাটুকারিতার সাহায্যে তোমাকে পাপের পথে প্রলুদ্ধ করে, তার হাত থেকে তোমাকে রক্ষা করবে প্রজ্ঞা| 17 য়ৌবনে সে বিয়ে করেছিল, কিন্তু পরবর্তীকালে সে স্বামীকে পরিত্যাগ করেছে| ঈশ্বরকে সাক্ষী রেখে বিবাহের শপথকে সে ভুলে গিয়েছে| 18 এখন, তুমি যদি তার ঘরে ঢোক তাহলে সেটা তোমাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে! তুমি যদি মেয়ে-মানুষটাকে অনুসরণ কর সে তোমাকে কবরের দিকে পরিচালিত করবে! 19 সে নিজেই কবরের মত| য়ে সব পুরুষরা তার বাড়ীতে ঢুকবে তারা তাদের জীবন হারাবে এবং আর কখনও ফিরে আসবে না| 20 প্রজ্ঞা তোমাকে ধার্মিকদের পথ অনুসরণ করতে সাহায্য করবে| প্রজ্ঞা তোমাকে সত্ভাবে জীবনযাপনে সাহায্য করবে| 21 সত্ এবং ধার্মিক লোকরা তাদের নিজেদের দেশে বসবাস করতে পারবে| সত্, নির্দোষ লোকরা তাদের দেশে বাস করতে পারবে| 22 কিন্তু শয়তান লোকদের বাসভূমি তাদের হাতছাড়া হবে| যারা মিথ্যা কথা বলে এবং প্রতারণা করে তারা নিজেদের দেশ থেকে বিতাড়িত হবে|
1 পুত্র আমার, আমার শিক্ষা ভুলো না| আমি তোমাকে যা করতে বলি তা সযত্নে মনে রেখো| 2 আমার কথাগুলি তোমাকে দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধিপূর্ণ জীবন প্রদান করবে| 3 ভালোবাসাকে কখনও পরিত্যাগ করো না| সর্বদা সত্ এবং বিশ্বস্ত থাকবে| এই জিনিসগুলিকে তোমার নিজের অঙ্গীভূত করে নাও| এইগুলি তোমার কন্ঠে জড়িয়ে রাখো, তোমার হৃদয়ে লিখে রাখো| 4 তাহলেই তুমি ঈশ্বর এবং মানুষের কাছে বিচক্ষণ এবং পুণ্যবান সাব্যস্ত হবে| 5 ঈশ্বরকে পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস কর| নিজের জ্ঞানের ওপর নির্ভর কোরো না| 6 তুমি যা কিছু করবে তাতে সর্বদা ঈশ্বরকে এবং তাঁর ইচ্ছাকে স্মরণ করবে| তাহলেই তিনি তোমাকে সাহায্য করবেন| 7 নিজের বুদ্ধি বিবেচনার ওপর নির্ভর কোরো না| ঈশ্বরকে ভক্তি কর এবং পাপ থেকে দূরে থাকো| 8 যদি তুমি এই কথাগুলি পালন কর তাহলে তুমি উপকৃত হবে ঠিক য়েমন ওষুধ শরীরকে নিরাময করে অথবা য়েমন এক মাত্রা তরল পানীয় তোমাকে শক্তি দেয়| 9 তোমার যথাসর্বস্ব সমর্পণ করে প্রভুকে ধন্য কর| তোমার শস্য়ের উত্কৃষ্টতম ফসলগুলি প্রভুর সামনে উত্সর্গ কর| 10 তাহলে তোমার যাবতীয় প্রয়োজন প্রভুই মিটিয়ে দেবেন| তোমার গোলা শস্য়ে ভরে যাবে এবং তোমার ভাণ্ডারে দ্রাক্ষারস উপচে পড়বে| 11 আমার পুত্র, কখনও কখনও তোমার ভুলত্রুটি তোমাকে দেখিয়ে দেবার জন্য প্রভু তোমাকে শাসন করবেন| এই শাস্তির জন্য রাগ কোরো না| ঐ শাস্তি থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা কোরো| 12 কেন? কারণ ঈশ্বর কেবল তাঁর স্নেহাস্পদদেরই সংশোধন করেন| হ্যাঁ, ঈশ্বর আমাদের পিতার মত, তিনি তাঁর প্রিয়তম সন্তানকেই শোধরানোর চেষ্টা করেন| 13 য়ে ব্যক্তি প্রজ্ঞা লাভ করেছে, সে সুখী হবে| যখন সে বোধশক্তিপ্রাপ্ত হবে, তখন সে আশীর্বাদধন্য হবে| 14 প্রজ্ঞা থেকে য়ে লাভ আসে তা রূপোর চেয়েও ভালো| প্রজ্ঞা থেকে য়ে লাভ হয় তা সূক্ষ্ম সোনার চেয়েও ভালো! 15 প্রজ্ঞার মূল্য মণি-মাণিক্যের চেয়েও বেশী| তোমার অভীষ্ট কোন বস্তুই প্রজ্ঞার মত অমূল্য নয়| 16 প্রজ্ঞা তোমাকে ধনসম্পদ, সম্মান এবং দীর্ঘজীবন এনে দেবে| 17 জ্ঞানী লোকরা শান্তিপূর্ণ, সুখী জীবনযাপন করে| 18 প্রজ্ঞা হল জীবন বৃক্ষের মত| প্রজ্ঞাকে যারা গ্রহণ করবে, তারা সুখী ও মনোরম জীবনযাপন করবে| জ্ঞানী ব্যক্তিরাই যথার্থ সুখী হবে! 19 প্রজ্ঞা এবং বোধকে প্রভু আকাশ এবং পৃথিবী সৃষ্টি করবার জন্য ব্যবহার করেছেন| 20 মহাসমুদ্র এবং মেঘরাশি যা বৃষ্টি দেয় তা প্রভুর জ্ঞানের দ্বারাই সৃষ্ট| 21 পুত্র আমার, প্রজ্ঞাকে তোমার দৃষ্টির অগোচর হতে দিও না! তোমার চিন্তা এবং পরিকল্পনা করবার ক্ষমতাকে বুদ্ধিমানের মত রক্ষা কর| 22 প্রজ্ঞা এবং বোধ তোমাকে জীবন দান করবে এবং তোমার জীবনকে আরও সুন্দর করে তুলবে| 23 তাহলে তুমি নিরাপদে জীবনযাপন করবে এবং কখনও পতিত হবে না| 24 বিছানায শুতে যাবার সময় তুমি ভয় পাবে না| তুমি শান্তিতে বিশ্রাম নিতে পারবে| 25 দুষ্ট লোকদের দ্বারা সৃষ্ট আশাতীত বিপদের কথা ভেবে ভয় পেও না| 26 প্রভু তোমার সঙ্গে থাকবেন এবং তোমাকে ফাঁদে পড়া থেকে আটকে দেবেন| 27 যখনই সম্ভব হবে, যাদের তোমার সাহায্যের দরকার, তাদের ভালো করো| 28 তোমার প্রতিবেশী যদি তোমার কাছে কিছু চায় এবং তা যদি তোমার কাছে থাকে, তাহলে সেটা তখনই তাকে দিয়ে দিও| প্রতিবেশীকে সেটা পরের দিন নিতে আসতে বোলো না| 29 তোমার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে দুষ্ট পরিকল্পনা কোরো না| সে তোমার কাছাকাছি থাকে এবং সে তোমাকে বিশ্বাস করে! 30 কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকে আদালতে তুলো না| সে যদি তোমার কোন অনিষ্ট না করে এটা কোরো না| 31 হিংসাত্মক লোকদের হিংসা কোরো না এবং তাদের পথ অনুসরণ করবার সিদ্ধান্ত নিও না| 32 কেন? কারণ প্রভু দুষ্ট, অসাধু লোকদের ঘৃণা করেন এবং সত্ ও ভালো লোকদের ভালবাসেন| 33 দুষ্ট লোকদের পরিবারগুলির ওপর প্রভুর অভিশাপ রযেছে| কিন্তু ধার্মিক লোকদের গৃহগুলিকে তিনি আশীর্বাদ করেন| 34 যারা অপরকে নিয়ে পরিহাস করে সেই দাম্ভিক ব্যক্তিদের প্রভু শাস্তি দেন| প্রভু বিনযী ব্যক্তিদের প্রতি দযাশীল| 35 জ্ঞানী লোকরা এমন জীবনযাপন করে যা সম্মান আনে| কিন্তু নির্বোধরা এমন জীবনযাপন করে যার পরিণতি লজ্জা|
1 পুত্রগণ, তোমাদের পিতার শিক্ষাসমূহ মনোয়োগ সহকারে শোন| মনোয়োগ দিলে তবেই এই হিতোপদেশগুলি বুঝতে পারবে! 2 কেন? কারণ আমার এই উপদেশগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ| তাই এই শিক্ষামালা কখনও ভুলে য়েও না| 3 এক সময় আমিও তোমাদের মত যুবক ছিলাম! আমি আমার পিতার ছোট পুত্র এবং আমার মাতার একমাত্র সন্তান ছিলাম| 4 এবং আমার পিতা আমাকে এই জিনিসগুলি শিখিযেছিলেন| তিনি আমাকে বলেছিলেন, “আমি যা বলি তা মনে রেখো| আমার আদেশ পালন কর, তাহলে বাঁচতে পারবে! 5 বিবেচনাশক্তি এবং জ্ঞান লাভ করো! কখনও আমার কথা ভুলো না| সর্বদা আমার উপদেশ মেনে চলবে| 6 জ্ঞান থেকে দূরে সরে থেকো না| তাহলে জ্ঞান তোমাকে রক্ষা করবে| জ্ঞানকে ভালোবাসো এবং জ্ঞান তোমাকে নিরাপদে রাখবে|” 7 তুমি য়ে মূহুর্ত থেকে জ্ঞান অর্জন করার সংকল্প করেছ তখন থেকেই জ্ঞানের পর্ব শুরু হয়েছে| অতএব তোমার সমস্ত প্রযাস ব্যবহার করে, এমনকি তোমার সমস্ত বিষয় সম্পত্তির বিনিময়েও জ্ঞান অর্জন করবার চেষ্টা করো! তাহলে তুমি ক্রমশঃ বুদ্ধিমান হয়ে উঠবে| 8 জ্ঞানকে ভালোবাস, জ্ঞানই তোমাকে মহান করে তুলবে| জ্ঞানকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলো এবং জ্ঞান তোমাকে সম্মান এনে দেবে| 9 জ্ঞানই সর্বশ্রেষ্ঠ বস্তু যা তোমার জীবনে ঘটতে পারে| 10 পুত্র, আমার কথা শোন| আমার আদেশ মেনে চললে তোমার আযু বাড়বে| 11 আমি তোমাকে প্রজ্ঞা বা জ্ঞান সম্পর্কে বোঝাচ্ছি| আমি তোমাকে সত্ পথে নিয়ে যাচ্ছি| 12 এই পথকে অনুসরণ করো| তাহলে তুমি কখনও ফাঁদে পড়বে না| তুমি দৌড়বে কিন্তু কখনও হোঁচট খাবে না| তুমি যাই কর না কেন, তুমি নিরাপদ থাকবে| 13 এই শিক্ষাগুলি সর্বদা মনে রেখো| এগুলি ভুলে য়েও না| ওগুলি তোমার জীবন! 14 দুষ্ট লোকরা য়ে পথে হাঁটে, সে পথে হেঁটো না| অসত্ভাবে জীবনযাপন কোরো না| পাপীদের অনুকরণ কোরো না| 15 পাপ থেকে দূরে থেকো| তার কাছে য়েও না| ওটা ছাড়িযে সোজা হয়ে হেঁটো| 16 কোনও দুষ্কর্ম না করা পর্য়ন্ত পাপীদের চোখে ঘুম আসে না| অপরের ক্ষতি না করে তারা বিশ্রাম নিতে পারে না| 17 পাপ এবং অন্যের ক্ষতি না করে তারা বাঁচতে পারে না| 18 ধার্মিক ব্যক্তিদের জীবনযাপনের পথ সূর্য়োদযের আলোর মত| দুপুরে সে তার পূর্ণদীপ্তি পাওয়া পর্য়ন্ত উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়| 19 পাপী লোকরা অন্ধকার রাতের মত| তারা আঁধারে হারিয়ে যায় এবং কি কারণে তাদের পতন হয় তা তারা দেখতেও পায় না| 20 পুত্র, আমার, আমি যা বলছি তা মন দিয়ে শোন| আমার উপদেশের প্রতি মনোনিবেশ কর| 21 আমার কথাগুলি য়েন তোমাকে ত্যাগ না করে| আমি যা সব বলি তা মনে রেখো| সেগুলি তোমার হৃদয়ে সম্পদ করে রেখো| 22 যারা আমার শিক্ষামালা শোনে তারা জীবন লাভ করে| আমার কথাগুলি তাদের শরীরে সুস্বাস্থ্য নিয়ে আসে| 23 সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তুমি যা ভাবছ সে সম্পর্কে সজাগ থেকো| তোমার ভাবনাই তোমার ভাগ্য নিযন্তা| 24 কখনও মিথ্যা কথা বলো না| সত্যকে কলুষিত করো না| 25 তোমার সামনে য়ে সব ভালো এবং জ্ঞানগর্ভ আদর্শ রযেছে তা থেকে মুখ ঘুরিযে নিও না| 26 যা করছ তার সম্বন্ধে সতর্ক থাকবে| সত্ জীবনযাপন কর| 27 সোজা পথ যা ভাল এবং সঠিক তা ত্যাগ কোরো না| কিন্তু সর্বদা পাপ থেকে দূরে থেকো|
1 পুত্র আমার, আমার জ্ঞানগর্ভ শিক্ষামালা শোন| আমার সুবিবেচনামূলক কথাবার্তার প্রতি মনোয়োগ দাও| 2 তাহলেই তুমি বিবেচকের মত বাঁচতে শিখবে| ভেবেচিন্তে কথা বলতে পারবে| 3 অন্য এক জন লোকের স্ত্রী হয়তো অসামান্য সুন্দরী হতে পারে; তার কথাবার্তা মধুর এবং প্রলোভনসূচক হতে পারে| 4 কিন্তু পরিশেষে সে শুধু তিক্ততা এবং যন্ত্রনাই বয়ে আনবে| সে তিক্ত বিষ কিংবা ধারালো তরবারির মত| 5 সে মৃত্যুর পথে দাঁড়িয়ে রযেছে| সে তোমাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে| 6 তাকে অনুসরণ কোরো না! সে পথভ্রষ্ট হয়েছে| সাবধান! জীবনের পথ বেছে নাও| 7 আমার পুত্রগণ, এখন আমার কথা শোন| আমি যা বলছি ভুলে য়েও না| 8 ব্যাভিচারিণী থেকে দূরে থেকো| তার বাড়ির ছায়াও মাড়িও না| 9 যদি যাও তোমার প্রাপ্য সম্মান অন্যরা কেড়ে নেবে| কোনও অপরিচিত ব্যক্তি তোমার পরিশ্রমের ফল ভোগ করবে| 10 তুমি যাদের চেনো না তারাই তোমার ধনসম্পদ কেড়ে নেবে| তারা তোমার শ্রমের সুফল ভোগ করবে| 11 পরিশেষে, তুমি দুঃখিত হবে কারণ তুমি তোমার স্বাস্থ্য নষ্ট করেছ এবং তোমার যা কিছু ছিল সব হারিয়েছ| 12 তখন তুমি বলবে, “আমি আমার অভিভাবকদের কথায় কেন কর্ণপাত করিনি! কেন আমার শিক্ষকদের কথা কানে তুলি নি! আমি শৃঙ্খলা মানতে রাজি হই নি| আমি তিরস্কার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছি| 13 14 তাই আমি এখন প্রায় সবরকম সংকট ভোগ করছি আর তা সবাই জানে!” 15 তোমার নিজের কুযো থেকে য়ে জল পাও, তাই পান কর| তোমার জলকে রাস্তার ওপর বয়ে য়েতে দিও না| কেবল মাত্র নিজের স্ত্রীর সঙ্গেই শুধু তোমার য়ৌন সম্পর্ক থাকা উচিত্| তোমার নিজের পরিবারের বাইরে কোন ছেলেমেয়ের পিতা হয়ো না| 16 17 তোমার সন্তানরা য়েন কেবল তোমারই হয়| তোমার পরিবারের বাইরে অন্য লোকদের সঙ্গে তোমার সন্তানদের ভাগ করে নেবার দরকার নেই| 18 তাই নিজের স্ত্রীকে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকো| য়ৌবনে য়ে নারীকে বিয়ে করেছিলে তাকেই ভালোবাস এবং তার প্রেমেই তৃপ্ত হও| 19 সে একটি অপরূপা হরিণীর মতো| তার ভালোবাসায সম্পূর্ণ তৃপ্ত হও| তার প্রেম তোমাকে সদা প্রমত্ত রাখুক| 20 আমার পুত্র, অন্য রমনীর দ্বারা প্রমত্ত হয়ো না| অন্য স্ত্রীলোকের বক্ষ আলিঙ্গন করো না! 21 তুমি যাই কর না কেন কিছুই প্রভুর অগোচর নয়| তুমি কোথায় যাও তাও প্রভু জানেন| 22 পাপী তার নিজের ফাঁদেই জড়িয়ে পড়বে| তার পাপসমূহ হবে দড়ির মত যা তাকে বেঁধে রেখেছে| 23 সেই পাপীর মৃত্যু অনিবার্য়| কারণ সে অনুশাসিত হতে অস্বীকার করেছে| সে তার নিজের কামনার নাগপাশেই বদ্ধ হবে|
1 পুত্র, অপরের ঋণের জন্য কখনও দাযী থেকো না| অন্য কোন ব্যক্তি তার ঋণ শোধ করতে না পারলে তুমি কি তাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছ? 2 তাহলে তুমি ফেঁসে গিয়েছ| তুমি নিজের প্রতিশ্রুতি জালেই জড়িয়ে পড়েছ| 3 তুমি নিজেকে ঐ ব্যক্তিটির ক্ষমতার অধীনে রেখেছ| শীঘ্র তার কাছে গিয়ে নিজেকে মুক্ত কর| তার ঋণের বোঝা থেকে তোমাকে মুক্ত করবার জন্য তার কাছে অনুরোধ জানাও| 4 বিশ্রাম করো না এবং ঘুমিযো না| 5 হরিণের মত শিকারীর ফাঁদ থেকে পালিয়ে এসো| জাল কেটে পালিয়ে যাওয়া পাখির মতো নিজেকে মুক্ত কর| 6 অলস মানুষ, তোমাদের পিঁপড়েদের মতো হওয়া উচিত্| দেখো, পিঁপড়েরা কি করে| পিঁপড়েদের কাছ থেকে শেখো এবং জ্ঞানী হও| 7 পিঁপড়েদের কোনও মালিক নেই, শাসক নেই, নেতা নেই| 8 কিন্তু গ্রীষ্ম কালে পিঁপড়েরা তাদের যাবতীয় খাবার সংগ্রহ করে| ঐ খাদ্য তারা বাঁচিয়ে রাখে এবং শীতের সময়ও তাদের কাছে পর্য়াপ্ত খাবার থাকে| 9 অলস মানুষ, আর কতক্ষণ তুমি ঘুমিয়ে থাকবে? তোমার শয়্য়ায বিশ্রাম নেওয়ার থেকে কখন তুমি উঠবে? 10 এক জন অলস ব্যক্তি বলে, “আমাকে কিছু ক্ষণের জন্য ঘুমোতে দাও এবং একটু বিশ্রাম নিতে দাও|” 11 তার অলসতার ফলস্বরূপ, এক জন চোর য়েমন সব কিছু চুরি করে নেয় সে রকম ভাবে তার ওপর দারিদ্র্য আসবে! অচিরেই সে কপর্দকহীন হয়ে পড়বে! 12 এক জন পাপী এবং অকর্মণ্য ব্যক্তি মিথ্যে কথা বলে এবং খারাপ কাজ করে| 13 সে চোখ টিপে এবং হাত ও পায়ের সাহায্যে নানা ধরণের ইঙ্গিত করে লোকদের ঠকায়| 14 ঐ ব্যক্তিটি দুষ্ট| সে সর্বদাই অপরের বিরুদ্ধে দুষ্ট পরিকল্পনা করে| সে সদাসর্বদা অশান্তি সৃষ্টি করে| 15 কিন্তু সে শাস্তি পাবে| আকস্মিক বিপর্য়য তার ওপর আসবে| অকস্মাত্ সে ধ্বংস হবে! এবং তাকে সাহায্য করবার কেউ থাকবে না! 16 প্রভু, সাতটি নয়, ছয়টি জিনিসকে ঘৃণা করেন: 17 য়ে চোখগুলো এক জন লোকের গর্ব দেখায়, য়ে জিহ্বা মিথ্যে কথা বলে, হাতগুলো য়েগুলো নির্দোষ লোকদের হত্যা করে, 18 হৃদয়সমূহ, যারা অন্যদের বিরুদ্ধে অনিষ্ট পরিকল্পনা করে, পা, য়েগুলো কু-কাজ করতে ছোটে, 19 য়ে ব্যক্তি আদালতে মিথ্যা সাক্ষী দেয় এবং যা সত্যি নয় তাই বলে, য়ে ব্যক্তি ভাইদের মধ্যে তর্কাতর্কির কারণ ঘটায| 20 পুত্র আমার, তোমার পিতার আদেশসমূহ শোন| তোমার মাতার শিক্ষাগুলি ভুলো না| 21 সদা তাঁদের কথা স্মরণ কোরো| তোমার অভিভাবকদের আদেশ তোমার কন্ঠে জড়িয়ে রাখো| তোমার হৃদয়ে লিখে রাখো| 22 যেখানেই যাও তাঁদের শিক্ষামালা তোমাকে পথ দেখাবে| এমনকি তুমি যখন শুয়ে থাকবে তখনও ঐ উপদেশগুলি তোমার ওপর নজর রাখবে| জেগে ওঠার পর তোমার সঙ্গে সেগুলো কথা বলবে এবং তোমাকে সঠিক পথে চালিত করবে| 23 তোমার অভিভাবকদের আদেশ এবং শিক্ষা আলোর মত তোমাকে পথ দেখাবে| সেগুলি তোমাকে সংশোধন করবে এবং সঠিক পথ চেনার ক্ষমতা প্রদান করবে| 24 তাঁদের শিক্ষাসমূহ তোমাকে এক জন নষ্ট স্ত্রীলোকের কাছে যাওয়া থেকে নিবৃত্ত করবে| ঐ শিক্ষাগুলি তোমাকে, য়ে নারী তার স্বামীকে পরিত্যাগ করেছে, তার মধুর বচন থেকে নিরাপদে রাখবে| 25 সেই পরস্ত্রী অসাধারণ রূপসী হতে পারে| কিন্তু তার সৌন্দর্য়্য়ের জন্য তোমার হৃদয়ে কামলালসা রেখো না| তার নয়নবান য়েন তোমাকে ফাঁদে না ফেলতে পারে| 26 এক জন বারবণিতার জন্য হয়তো তোমাকে একটি রুটির মূল্য দিতে হবে| কিন্তু অন্য লোকের স্ত্রী তোমার প্রাণসংহারিণী হয়ে উঠতে পারে! 27 য়ে ব্যক্তি আগুনের খুব কাছে যায় সে তার জামাকাপড় ঐ আগুনে পোড়ায| 28 জ্বলন্ত কযলায পা দিলে পা নিশ্চিত পুড়বে| 29 য়ে ব্যক্তি পরস্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে লিপ্ত হয় তার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রয়োজ্য়| ঐ ব্যক্তি শাস্তি ভোগ করবে| 30 ক্ষুধার্ত ব্যক্তি খাদ্য চুরি করতে পারে| চুরি করার সময় ধরা পড়লে, সে যা চুরি করেছে তার সাতগুণ মূল্য তাকে দিতে হবে! ঐ মূল্য দিতে গিয়ে হয়তো সে সর্বস্বান্ত হবে! কিন্তু যারা তার প্রকৃত অবস্থা বোঝে তারা তার প্রতি শ্রদ্ধা হারাবে না| 31 32 কিন্তু য়ে ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় সে নির্বোধ| সে তার নিজের পতন ডেকে আনছে এবং নিজেকেই ধ্বংস করছে! 33 মানুষ তার সম্পর্কে শ্রদ্ধা হারাবে| সে নিজে ওই লজ্জা থেকে কোন দিন পরিত্রাণ পাবে না| 34 ওই ব্যভিচারিণীর স্বামী হিংসা ও ক্রোধে উন্মত্ত হবে| সে যখন তার স্ত্রীর প্রেমিকের প্রতি প্রতিশোধ নেবে তখন সে করুণা দেখাবে না| 35 যত অর্থ, যত ধনসম্পদই তাকে দেওয়া হোক না কেন তার ক্রোধ প্রশমিত হবে না!
1 পুত্র আমার, আমার কথাগুলো মনে রেখো| আমার আদেশ ভুলো না| 2 তুমি যদি আমার আদেশ পালন কর তুমি বাঁচবে| আমার এই শিক্ষামালা য়েন তোমার জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে| 3 আমার শিক্ষা এবং আদেশ সর্বদা মনে রেখো| আমার শিক্ষামালা তোমার আঙুলের চারপাশে বেঁধে রাখো| তোমার হৃদয়ে খচিত করে রাখো| 4 প্রজ্ঞাকে তোমার প্রেমিকহিসেবে বিবেচনা করো এবং বোধকে তোমার সব চেয়ে ভাল বন্ধু বলে বিবেচনা করবে| 5 তাহলে প্রজ্ঞা এবং বোধ তোমাকে “পরস্ত্রী” থেকে রক্ষা করবে| প্রজ্ঞা তোমাকে সেই ব্যভিচারিণীর হাত থেকেও রক্ষা করবে য়ে মধুর বাক্য বলে| 6 এক দিন আমি আমার জানালার বাইরে বহু নির্বোধ যুবককে দেখতে পেলাম| 7 ঐ যুবকদের মধ্যে এক বুদ্ধিহীন যুবকও আমার নজরে পড়লো| 8 সে এক কু-রমণীর বাড়িতে গেল| সে ঐ রমণীর বাড়ির সামনে দিয়ে হাঁটতে লাগল| 9 তখন সূর্য় অস্ত যাচ্ছে| অন্ধকার নেমে আসছে| রাত শুরু হচ্ছিল| 10 ঐ রমণী যুবকের সঙ্গে দেখা করতে বাড়ির বাইরে এল| তার সাজসজ্জা বারবণিতার মতো| সে ঐ যুবকের সঙ্গে সারা রাত কাটানোর পরিকল্পনা করেছিল| 11 সে ছিল এক জন বিদ্রোহীসুলভ, অমার্জিত নারী| সে কখনও ঘরে থাকতে ভালবাসত না! 12 সে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে লাগল| সে রাস্তার প্রতিটি বাঁকে অপেক্ষা করছিল| 13 সে ঐ যুবককে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করল| সেই লজ্জাহীন ঐ যুবকের চোখের দিকে তাকিযে বলল, 14 “আমাকে আজ মঙ্গলার্থক বিসর্জন দিতে হয়েছে| আমি আমার মানত পূর্ণ করেছি| 15 বাড়ীতে আমার কাছে এখনও অমাবস্যার নৈবেদ্যর খাবার প্রচুর পরিমাণে পড়ে রযেছে| তাই তোমাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি| অনেক খোঁজাখুঁজি এবং প্রতীক্ষার পর অবশেষে তোমাকে পেলাম! 16 আমি আমার শয়্য়ার নতুন চাদর পেতেছি| মিশরীয সেই সূতীর বিছানার চাদরগুলি খুব সুন্দর| 17 আমি আমার শয়্য়ার ওপর মস্তকি, ঘৃতকুমারী ও দারুচিনির সুগন্ধি ছড়িয়েছি! 18 এস, আমরা সারারাত ধরে য়ৌনক্রীড়ায মত্ত হই| আমরা সকাল পর্য়ন্ত প্রণযজ্ঞাপন করব| 19 আমার স্বামী ঘরে নেই| তিনি বাণিজ্য় করতে দূরে যাত্রা করেছেন| 20 তিনি প্রচুর অর্থ সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছেন| বহুদিন ঘরে ফিরবেন না| আগামী পূর্ণিমার আগে তাঁর ফেরার সম্ভাবনা নেই|” 21 ঐ ব্যভিচারিণী যুবকটিকে প্রলুদ্ধ করবার চেষ্টা করছিল| তার মনোরম মধুর বচনে যুবকটি বিপথগামী হল| 22 এবং নির্বোধ যুবকটি ঐ ব্যাভিচারিণীর ফাঁদে পা দিল| গরু য়ে ভাবে কসাইখানার দিকে পা বাড়ায, হরিণ য়েমন ব্যাধের পেতে রাখা ফাঁদের দিকে এগিয়ে যায়, সেই ভাবে সে ঐ পরস্ত্রীর দিকে এগিয়ে গেল| 23 ঐ যুবকটি ছিল একজন শিকারীর তীরবিদ্ধ হরিণের মত| সে ছিল জালের দিকে উড়ে যাওয়া একটি পাখীর মত| তার পরিণাম য়ে তার জীবনহানি ঘটাবে এ কথা ঐ যুবকটি ভাবতেও পারে নি| 24 প্রিয় পুত্রগণ, আমার কথা শোন| আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোন| 25 কোন পাপীযসী রমণীর মোহজালে আবদ্ধ হয়ো না| তার পথ অনুসরণ কোরো না| 26 সে অগুনতি মানুষের পতন ঘটিযেছে| সে অসংখ্য় মানুষকে ধ্বংস করেছে| 27 তার গৃহ সাক্ষাত্ মৃত্যুপুরী| তার জীবনযাপনের পদ্ধতি মানুষকে সরাসরি মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়|
1 শোন! প্রজ্ঞা কি তোমাকে ডাকছে? হ্যাঁ, বোধ তোমাকে ডাকছে| 2 মহিলাটি (প্রজ্ঞা) পাহাড়ের চূড়ায়, সড়কের ধারে, সকল পথের সংয়োগস্থলে দাঁড়িয়ে| 3 সে নগরের প্রধান ফটকগুলির সামনে দাঁড়িয়ে আছে| সেখান থেকেই সে উচ্চস্বরে ডাক দিচ্ছে| 4 প্রজ্ঞা বলছে, “হে মানবগণ, আমি তোমাদের ডাকছি| চিত্কার করে সমস্ত লোককে ডাকছি| 5 যদি তোমরা অবোধ হও, বুদ্ধিমান হওয়ার চেষ্টা কর| নির্বোধরা বোঝার চেষ্টা কর| 6 শোন! আমি য়েসব জিনিসের শিক্ষা দিই তা গুরুত্বপূর্ণ| আমি যা বলি তা সঠিক| 7 আমার কথাগুলি সত্য| আমি ক্ষতিকারক মিথ্যাকে ঘৃণা করি| 8 আমি যা বলি তা সঠিক| আমি মিথ্যা কথা বলি না| আমার কথাগুলোয কোন মিথ্যা বা ভুল নেই| 9 আমার কথাগুলি, যাদের বোধশক্তি আছে সেই সব লোকের কাছে পরিষ্কার| জ্ঞানবানরা আমার উপদেশ বুঝতে সক্ষম| 10 আমার অনুশাসন গ্রহণ কর| তার মূল্য রূপার চেয়েও বেশী| সেটি উত্কৃষ্টতম সোনার চেয়েও মূল্যবান| 11 জ্ঞান, দূর্মূল্য মুক্তার চেয়েও দামী| মানুষের অভীষ্ট কোন বস্তুই তার সমকক্ষ নয়|” 12 “আমি প্রজ্ঞা| আমি সুবিচারের সঙ্গে বাস করি| আমি সুপরিকল্পনা এবং জ্ঞান খুঁজে পেয়েছি| 13 প্রভুকে শ্রদ্ধা জানানোর অর্থ হল পাপকে ঘৃণা করা| সেইসব মানুষ যারা নিজেকে অন্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করে আমি তাদের ঘৃণা করি| আমি পাপের পথ এবং মিথ্যাভাষীকে ঘৃণা করি| 14 আমি মানুষকে সুবুদ্ধি এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করি| আমিই সুবিবেচনা এবং ক্ষমতার আধার! 15 রাজারা শাসনকার্য়ে আমাকে ব্যবহার করেন| ন্যায্য আইন বানাতে শাসকরা আমাকে ব্যবহার করেন| 16 পৃথিবীর সমস্ত ভাল শাসক তাঁদের অধীনস্থ সমস্ত লোককে শাসন করতে আমাকে ব্যবহার করেন| 17 য়ে সব লোক আমাকে ভালোবাসে আমিও তাদের ভালোবাসি| যারা সযত্নে আমার অন্বেষণ করে তারা আমাকে খুঁজে পাবে| 18 আমার দেবার মত ধনসম্পদ ও সম্মান রযেছে| আমি সত্যিকারের সম্পদ এবং সাফল্য প্রদান করি| 19 আমি য়ে সব জিনিস দিই তা খাঁটি সোনার চেয়েও ভালো এবং আমার উপহারসমূহ খাঁটি রূপোর চেয়েও ভালো| 20 আমি ধর্মের পথে চলি| আমি ন্যায় বিচারের পথ ধরে চলি| 21 যারা আমাকে ভালোবাসে আমি তাদের সম্পদ দিই| হ্যাঁ, আমি তাদের ঘরবাড়ি ধনসম্পদে পরিপূর্ণ করে তুলি| 22 বহুকাল আগে, শুরুতে প্রভু অন্য আর কিছু সৃষ্টি করবার আগে আমাকে সৃষ্টি করেছিলেন| 23 আমিই আদি| আমাকে সবার আগে সৃষ্টি করা হয়েছিল| পৃথিবীর আগে আমাকে সর্বপ্রথম সৃষ্টি করা হয়েছিল| 24 মহাসাগরের আগে আমাকে গঠন করা হয়েছিল| সেখানে জল সৃষ্টির আগে আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছিল| 25 আমি পর্বতসমূহের আগে জন্মেছিলাম| আমি পাহাড়সমূহের আগে জন্মেছিলাম| 26 প্রভুর পৃথিবী সৃষ্টির আগে আমি জন্মেছিলাম, ভূমি তৈরীর আগে আমি জন্মেছিলাম| ঈশ্বরের পৃথিবীতে প্রথম ধূলিকনা সৃষ্টি করার আগে আমি জন্মেছিলাম| 27 প্রভু যখন আকাশ তৈরী করেন সেই সময় আমি ছিলাম| প্রভু যখন ভূমির চারদিকে একটি বৃত্ত এঁকেছিলেন এবং সাগরের সীমারেখা স্থির করেছিলেন তখন আমি ছিলাম| 28 মেঘ সৃষ্টির আগে আমি রূপ পেয়েছিলাম| ঈশ্বর যখন সাগরে জল ঢালছিলেন, আমি সেখানে ছিলাম| 29 প্রভু যখন সমুদ্রসমূহে জলের সীমা নির্ধারণ করেছিলেন সে সময়ে আমি সেখানে ছিলাম| সমুদ্রের তরঙ্গদল কখনই প্রভুর নির্ধারিত সীমা লঙঘন করে না| প্রভু যখন পৃথিবীর ভিত্তিস্থাপন করেন, তখন আমি ছিলাম| 30 আমি এক জন দক্ষ কর্মীর মত প্রভুর পাশে ছিলাম| আমার জন্যই প্রভু প্রতি দিন আনন্দবোধ করেছেন| আমি তাঁর সঙ্গে সব সময় হাসি মুখে থেকেছি| 31 তাঁর জগত্ আমাকে খুশি করে| আমি মানবজাতির সঙ্গ সুখ অনুভব করি| 32 “আমার পুত্রগণ, এখন আমার কথাগুলি শোন! এবং তোমরাও আমার আশীর্বাদ পাবে! 33 আমার শিক্ষামালা শোন এবং জ্ঞানী হয়ে ওঠো| ওগুলোকে অগ্রাহ্য কোরো না| 34 য়ে আমার কথা মেনে চলবে সে ধন্য হবে| এমন এক জন লোক প্রতি দিন আমার দরজার দিকে লক্ষ্য করে| সে আমার দরজার পথে প্রতীক্ষা করে| 35 য়ে আমাকে খুঁজে পায় সে জীবন লাভ করে| সে প্রভুর কাছ থেকে ভালো জিনিস পাবে! 36 কিন্তু য়ে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে পাপ করে সে নিজেকে আঘাত করে| য়ে সব লোক আমাকে ঘৃণা করে তারা মৃত্যুকে ভালোবাসে!”
1 জ্ঞান তার বাড়ি তৈরী করল| সে তার বাড়িতে সাতটি স্তম্ভ স্থাপন করল| 2 সে (জ্ঞান) মাংস রান্না করল এবং দ্রাক্ষারস তৈরী করল| সে খাওয়ার টেবিলটি সাজিযে রেখেছে| 3 তারপর সে তার ভৃত্যদের নগরে পাঠাল নগরবাসীদের পর্বতের চূড়ায় তার সঙ্গে ভোজসভায য়োগদান করার আমন্ত্রণ জানাতে| সে বলল, 4 “যাদের শেখার প্রয়োজন আছে তারা আসুক|” সে নির্বোধ লোকদেরও আমন্ত্রণ করল| সে বলল, 5 “এস, আমার জ্ঞানের খাবার খাও এবং আমি য়ে দ্রাক্ষারস তৈরী করেছি তা পান কর| 6 তোমাদের নির্বোধের পথ ত্যাগ কর, শুধুমাত্র তাহলেই তোমরা জীবন পাবে| বোধের পথকে অনুসরণ কর|” 7 তুমি যদি কোন দাম্ভিক ব্যক্তিকে তার ভুলত্রুটি সম্পর্কে সচেতন করতে যাও, তাহলে সে উল্টে তোমার সমালোচনা করবে| ঐ ব্যক্তি ঈশ্বরপ্রদত্ত জ্ঞানের অবমাননা করে| যদি কোন দুষ্ট লোককে তার অন্যায় বোঝাতে যাও, তাহলে সে তোমাকেই বিদ্রূপ করবে| 8 তাই যদি কোন ব্যক্তি নিজেকে অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করে, তাকে তার ভুল বোঝাতে য়েও না| সে তোমাকে তার জন্য ঘৃণা করবে| কিন্তু তুমি যদি কোন জ্ঞানী ব্যক্তিকে সংশোধন করতে চেষ্টা কর সে তোমাকে ভালবাসবে ও তোমাকে শ্রদ্ধা জানাবে| 9 বুদ্ধিমান ব্যক্তিকে শিক্ষা দিলে সে আরও বুদ্ধিমান হবে| ধার্মিক ব্যক্তিকে উপদেশ দিলে তাতে তার উপকার হবে| 10 প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভক্তিই জ্ঞান অর্জন করার প্রথম ধাপ| প্রভু সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করাই বোধশক্তি অর্জনের প্রথম ধাপ| 11 তুমি যদি জ্ঞানী হও, তাহলে তুমি দীর্ঘজীবি হবে| 12 যদি তুমি জ্ঞানী হয়ে ওঠো তাহলে তাতে তুমি উপকৃত হবে| কিন্তু তুমি যদি দাম্ভিক হও এবং অপরকে উপহাস কর, তাহলে নিজেই তার জন্য যন্ত্রণা পাবে| 13 মূঢ়তা একটি প্রবল অমার্জিত স্ত্রীলোক| তার কোনও জ্ঞান নেই| 14 সে নিজের ঘরের দরজায বসে থাকে| সে শহরের উচ্চতম স্থলে নিজের আসনের ওপর বসে থাকে| 15 এবং যখন লোকরা ঐ পথ দিয়ে যায় সে তাদের চিত্কার করে ডাকে| ঐসব লোকরা তার প্রতি উদাসীন থাকলেও সে বলে, 16 “যাদের শেখার প্রয়োজন আছে তারা আমার কাছে এস|” সে নির্বোধদেরও আহ্বান করে| 17 কিন্তু সে (নির্বুদ্ধিতা) বলে, “চুরি করা জল, নিজের বাড়ির জলের চেয়ে সুস্বাদু| চোরাই রুটি তোমার নিজের হাতে তৈরী করা রুটির চেয়ে উপাদেয়|” 18 বোকাগুলো বুঝতে পারেনি য়ে সেখানে ভূত থাকে| কারণ মেয়েমানুষটা তাদের মৃত্যুর জগতের গভীরতম স্থানে নিমন্ত্রণ করেছিল|
1 এগুলি ছিল শলোমনের হিতোপদেশ:এক জন জ্ঞানী পুত্র তার পিতাকে সুখী করে| কিন্তু এক জন নির্বোধ পুত্র তার মাকে খুবই দুঃখী করে| 2 যদি কোন লোক খারাপ কাজ করে টাকা লাভ করে তাহলে সেই টাকা কোন কাজেই আসে না| কিন্তু ভাল কাজ তোমাকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে পারে| 3 প্রভু ভালো লোকদের প্রতি যত্নশীল হন| তিনি তাদের পর্য়াপ্ত খাবার য়োগান| কিন্তু প্রভু পাপীদের অভীষ্ট বস্তু কেড়ে নেন| 4 এক জন অলস ব্যক্তি দরিদ্র হবে| কিন্তু এক জন পরিশ্রমী মানুষ ধনী হবে| 5 এক জন জ্ঞানী পুত্র সঠিক ঋতুতে শস্য কাটবে| কিন্তু কোন লোক যদি শস্য সংগ্রহের সময় ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে সে লজ্জিত হবে| 6 সজ্জন ব্যক্তিদের আশীর্বাদ করার জন্য লোকরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানায| পাপীরাও ভালো ভালো কথা বলে কিন্তু তা শুধু নিজেদের যাবতীয় দুষ্ট ইচ্ছা লোকচক্ষু থেকে আড়ালে রাখার জন্য| 7 ধার্মিক লোকরা চির কাল সকলের কাছে স্মরণীয হয়ে থাকে| কিন্তু দুষ্ট লোকদের নাম সকলে অচিরেই ভুলে যায়| 8 এক জন জ্ঞানী লোক তার অগ্রজদের আদেশ পালন করে| কিন্তু এক জন নির্বোধ তর্কবিতর্ক করে নিজের বিপদ ডেকে আনে| 9 এক জন ভাল, সত্ লোক সর্বদা নিরাপদে থাকে| কিন্তু য়ে কুলি ব্যক্তি অপরকে প্রতারিত করে সে অচিরেই ধরা পড়ে| 10 য়ে ব্যক্তি সত্যকে আড়াল করে, সে অশান্তির কারণ হয়| কিন্তু একজন সত্ লোক, য়ে খোলাখুলি ভাবে কথা বলে সে শান্তি স্থাপন করে| 11 এক জন জ্ঞানী ব্যক্তির কথাবার্তা একটি ঝর্ণার মত যা জীবন দেয়| কিন্তু দুষ্ট লোকের কথাবার্তা কেবল তাদের পাপী মনেরই পরিচয় দেয়| 12 ঘৃণা বিবাদের সৃষ্টি করে| কিন্তু ভালোবাসা সমস্ত ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করে দেয়| 13 বুদ্ধিমান লোকদের বক্তৃতা থেকে লোকরা জ্ঞান আহরণ করতে পারে| কিন্তু য়ে লোকরা বোকার মত কথা বলে তারা তাদের শাস্তি দেয়| 14 জ্ঞানী ব্যক্তিরা জ্ঞান সঞ্চয় করে এবং তাকে একটি নিরাপদ জায়গায় সংরক্ষিত করে| কিন্তু মুর্খ লোকরা তাদের ধ্বংসকে হাতের কাছে রাখে| 15 সম্পদ ধনীকে রক্ষা করে কিন্তু দারিদ্র্য গরীব মানুষকে ধ্বংস করে| 16 য়ে ব্যক্তি সত্ কাজ করে সেই পুরস্কৃত হয়| সে দীর্ঘ জীবন পায়| পাপ কেবল শাস্তিই বয়ে আনে| 17 য়ে ব্যক্তি তার শাস্তি থেকে শিক্ষা নেয় সে অন্যদের বাঁচতে সাহায্য করতে পারে| কিন্তু য়ে ব্যক্তি নিজের শাস্তি থেকে অন্য কোনো শিক্ষা নেয় না সে অন্যদের ভুল পথে পরিচালিত করে| 18 য়ে ব্যক্তি তার ঘৃণা লুকিয়ে রাখে সে হয়ত একজন মিথ্যেবাদী| কিন্তু যারা মিথ্যে অপবাদ রটায তারা বোকা| 19 য়ে ব্যক্তি খুব বেশী কথা বলে সেই মুস্কিলে পড়ে| কিন্তু একজন জ্ঞানী মানুষ তার কথা সংযত রাখতে শেখে| 20 এক জন সজ্জন ব্যক্তির কথাবার্তা খাঁটি রূপোর মত| কিন্তু পাপীদের চিন্তাভাবনার কোন মূল্য নেই| 21 এক জন ধার্মিক ব্যক্তির উপদেশ অনেক লোককে সাহায্য করবে| কিন্তু নির্বোধের বোকামি তার মৃত্যু ডেকে আনবে| 22 প্রভুর আশীর্বাদই তোমাকে ধনবান করবে| তিনি তার সঙ্গে সংকট আনবেন না| 23 নির্বোধ লোকরা কু-কাজ করতে ভালোবাসে| কিন্তু বিচক্ষণ ব্যক্তি প্রজ্ঞাতেই সন্তুষ্ট থাকেন| 24 দুষ্ট ব্যক্তি যা ভয় করে তার ভাগ্য়ে তাই ঘটবে| কিন্তু ধার্মিকদের বাসনা সফল হবে| 25 যখন সংকট আসবে দুষ্ট লোকরা ধ্বংস হবে| কিন্তু ধার্মিক লোকরা চির কাল অটল থাকে| 26 কোন অলস ব্যক্তিকে তোমার জন্য কোন কিছু করতে পাঠিও না| মুখের মধ্যে অম্লরস কিংবা চোখের মধ্যে ধোঁযা য়েমন বিরক্তিকর - সেও ঠিক সে ভাবেই তোমার বিরক্তির কারণ হবে| 27 প্রভুকে সম্মান করলে তুমি দীর্ঘজীবি হবে| কিন্তু পাপীলোকদের আযু হ্রাস পাবে| 28 ধার্মিকদের প্রত্যাশা জীবনে আনন্দ বয়ে আনে| কিন্তু পাপীদের বাসনা কেবল ধ্বংসই ডেকে আনে| 29 প্রভু ধার্মিক লোকদের রক্ষা করেন| কিন্তু প্রভু অন্যায়কারীদের ধ্বংস করেন| 30 ধার্মিক লোকরা সব সময় নিরাপদে থাকবে| কিন্তু পাপীরা দেশ থেকে উত্খাত হবে| 31 ভালো লোকদের কথাগুলো জ্ঞানগর্ভ| কিন্তু য়ে ব্যক্তির উপদেশ বিপদ ডেকে আনে তার কথা কেউ শুনবে না| 32 ভালো লোকরা ঠিক জিনিসটি বলতে জানে| কিন্তু দুষ্ট লোকদের কথা অশান্তি ডেকে আনে|
1 কিছু মানুষ অপরকে প্রতারিত করতে ভুযো দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করে| তাদের দাঁড়িপাল্লা সঠিক ওজন দেখায় না| প্রভু ঐ ভুযো দাঁড়িপাল্লাকে ঘৃণা করেন| যথায়থ বাটখারা প্রভুকে তুষ্ট করে| 2 যারা অহঙ্কারী তাদের লজ্জায় ফেলা হবে| কিন্তু বিনযীরা জ্ঞান অর্জন করবে| 3 ভালো লোকরা সততা দ্বারা চালিত হয়| কিন্তু অপরকে প্রতারিত করতে গিয়ে পাপীরা নিজেদের ধ্বংস করে| 4 ঈশ্বর য়ে দিন লোকদের শাস্তি দেবেন, ধনসম্পদ কোন কাজে লাগবে না| কিন্তু ধার্মিকতা মানুষকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করবে| 5 এক জন সত্ ব্যক্তির সততাই তার জীবনকে মসৃণ করবে| কিন্তু পাপীরা তাদের দুষ্ট কর্মের জন্য ধ্বংস হবে| 6 ধার্মিকতা সত্ লোকদের রক্ষা করে| কিন্তু দুষ্ট লোকরা তাদের কামনার জালেই আবদ্ধ হয়| 7 এক জন দুষ্ট ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার আর কোনও আশা নেই| ধনসম্পত্তির জন্য তার সমস্ত আশাও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়| 8 এক জন ভালো ব্যক্তিকে সংকট থেকে মুক্ত করা হবে এবং ঐ সংকট আসবে এক জন দুষ্ট লোকের কাছে| 9 দুষ্ট ব্যক্তি তার কথার দ্বারা অন্য লোকের ক্ষতি করতে পারে| কিন্তু ভালো লোকরা তাদের জ্ঞান দ্বারা সুরক্ষিত হয়| 10 ধার্মিকদের সাফল্যে সমগ্র নগর আনন্দে মেতে ওঠে| কিন্তু পাপীদের মৃত্যুতেও মানুষ উল্লসিত হয়| 11 ভালো লোকদের আশীর্বাদে একটি শহর মহান হয়ে ওঠে| কিন্তু দুষ্ট লোকদের কথা একটি শহরকে ধ্বংস করতে পারে| 12 সুবিবেচনাহীন লোকরা তাদের প্রতিবেশীদের সম্বন্ধে বিরাগ দেখায়| কখন নীরব থাকা উচিত্ বিচক্ষণ ব্যক্তি তা জানে| 13 য়ে ব্যক্তি অন্য লোকের গোপন কথা ফাঁস করে দেয় তাকে বিশ্বাস করা যায় না| য়ে ব্যক্তি গুজব ছড়ায় না তাকে বিশ্বাস করা যায়| 14 যদি একটি জাতির নেতাদের বিজ্ঞ দিশাজ্ঞানের অভাব থাকে তাহলে সেই জাতির পতন অনিবার্য়| কিন্তু অনেক সু-উপদেষ্টারা একটি জাতিকে নিরাপদ রাখতে পারে| 15 য়ে এক জন অপরিচিত লোকের ঋণ শোধ করবার প্রতিশ্রুতি দেয় তাকে দুঃখ পেতে হবেই| অন্যের জামিনদার হতে য়ে অস্বীকার করে, সে নিরাপদ| 16 এক জন রমণী তার সৌন্দর্য়্য়ের জন্য অন্যদের শ্রদ্ধা অর্জন করে| দুরন্ত, দুঃসাহসী মানুষ কেবল টাকা লাভ করতে পারে| 17 দযালু ব্যক্তিরা সর্বদা লাভবান হবে| কিন্তু নিষ্ঠুর লোকরা তাদের নিজেদের অশান্তির কারণ হয়| 18 দুষ্ট লোক অপরকে প্রতারিত করে তাদের সম্পত্তি কেড়ে নেয়| কিন্তু য়ে সব লোকরা ধর্মসঙ্গত কাজকর্ম করে তারা অবশ্যই পুরস্কার লাভ করবে| 19 ধার্মিকতা জীবন নিয়ে আসে| দুষ্ট লোকরা পাপের পিছনে ছোটে এবং নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনে| 20 যারা পাপ কাজ করতে ভালোবাসে প্রভু তাদের ঘৃণা করেন| কিন্তু য়ে সব লোক সত্ জীবনযাপন করে প্রভু তাদের ওপর সন্তুষ্ট| 21 একথা সত্যি য়ে দুষ্ট লোকরা উপযুক্ত শাস্তি পাবেই| কিন্তু ভালো লোকরা ও তাদের উত্তরপুরুষ শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে| 22 এক জন সুন্দরী কিন্তু মূঢ় নারী য়েন শুয়োরের নাকে সোনার নথের মত| 23 যখন ভালো লোকদের ইচ্ছাপূর্ণ হয় তখন ভালোই হয়| কিন্তু দুষ্ট লোকদের কামনা সফল হলে তা শুধু শাস্তি নিয়ে আসে| 24 য়ে ব্যক্তি মুক্ত হস্তে দান করে সে আরও বেশী পাবে| য়ে ব্যক্তি বিতরণ করতে অস্বীকার করে সে অচিরেই গরীব হয়ে যাবে| 25 য়ে ব্যক্তি দরাজ ভাবে দান করে সে-ই উপকৃত হবে| য়ে অন্যদের সাহায্য করে সে সাহায্য পাবে| 26 য়ে ব্যক্তি তার শস্য বিক্রী করতে অস্বীকার করে, লোকে তাকে অভিশাপ দেয়| অন্যের খিদে মেটাতে য়ে তার শস্য বিতরণ করে তাকে সকলেই ভালোবাসে| 27 য়ে অন্যদের ভালো চায়, ভালোত্ব তাকে অনুসরণ করে| কিন্তু যারা মন্দের পেছনে ছোটে তারা মন্দই পায়| 28 নিজের ধনসম্পত্তির ওপর য়ে আস্থা রাখে সে শুকনো পাতার মতই ঝরে যাবে| কিন্তু ভালো লোকরা সবুজ পাতার মত উন্নতি করবে| 29 য়ে ব্যক্তি নিজের পরিবারকে বিপন্ন করে সে কোন কিছুই লাভ করতে পারে না এবং পরিশেষে নির্বোধরা বুদ্ধিমানদের দাসত্ব করতে বাধ্য হয়| 30 ধার্মিকের কর্মফল জীবনবৃক্ষের মত| জ্ঞানবান ব্যক্তিগন অপরকে জীবনদান করে| 31 ভালো লোকরা য়েমন তাদের পুরস্কার এই জীবনে পায়, তেমনি মন্দ লোকরাও তাদের যা প্রাপ্য তা পাবে|
1 য়ে ব্যক্তি জ্ঞানলাভ করতে উদগ্রীব, সে তার নিজের সমালোচনা শুনলে ক্রুদ্ধ হবে না| য়ে ব্যক্তি নিজের ত্রুটি বিচ্যুতি সম্পর্কে অন্যের অনুয়োগ শুনতে অপছন্দ করে সে নির্বোধ| 2 প্রভু ধার্মিকদের ওপর সন্তুষ্ট| কিন্তু যারা কু-পরিকল্পনা করে প্রভু তাদের দোষী হিসেবে বিচার করেন| 3 পাপীরা কখনই নিরাপদ নয়| কিন্তু ধার্মিকরা সর্বদা সুরক্ষিত ও নিরাপদ| 4 গুণবতী স্ত্রী তার স্বামীর আনন্দ এবং অহঙ্কারের উত্স| কিন্তু য়ে স্ত্রী তার স্বামীকে লজ্জিত করে সে তার স্বামীর অস্থিতে একটি অসুখের মতই অসহ্য| 5 ধার্মিকরা যা পরিকল্পনা করে তা সর্বদাই সত্ এবং সঠিক| কিন্তু লোকদের কু-পরিকল্পনা প্রতারণাপূর্ণ| 6 পাপী লোকরা তাদের কথাবার্তার মাধ্যমে অন্যদের আঘাত করে| কিন্তু ধার্মিক লোকদের কথাবার্তা মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করে| 7 পাপী লোকরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং তাদের কিছুই অবশিষ্ট থাকে না| কিন্তু কোনও ধার্মিক ব্যক্তির মৃত্যুর পরও মানুষ তাকে দীর্ঘকাল মনে রাখে| 8 লোকরা জ্ঞানী মানুষের প্রশংসা করে| কিন্তু লোক কোনও নির্বোধ ব্যক্তিকে সম্মান করে না| 9 খাবার সংস্থান নেই অথচ ধনী হবার ভান করবার চেয়ে বরং একজন ভৃত্যের মালিক হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়া ভালো| 10 ভালো লোকরা তাদের পালিত পশুদের যত্ন নেয়| কিন্তু দুষ্টদের হৃদয়ে সহানুভূতি থাকে না| 11 য়ে কৃষক তার জমিতে পরিশ্রম করে তার পর্য়াপ্ত খাদ্য থাকবে| কিন্তু য়ে ব্যক্তি অসার চিন্তাভাবনায় সময় নষ্ট করে সে নির্বোধ| 12 পাপী লোকরা যা আকাঙ্খা করে দুষ্ট লোকরা তাই চায়, কিন্তু সেটা ভালো লোকদের দেওয়া হবে| 13 দুষ্ট লোকরা নির্বোধের মত কথা বলে এবং প্রায়শঃই নিজেদের কথার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ে| ধার্মিকরা এধরণের বিপদের সম্মুখীন হয় না| 14 লোকরা তাদের মুখ নিঃসৃত কথার জন্য এবং হাতের কাজের জন্যও পুরস্কৃত হয়| 15 নির্বোধরা ভাবে তাদের পথই শ্রেষ্ঠ পথ| কিন্তু বিবেচকরা অন্যের পরামর্শ খোলামনে গ্রহণ করে| 16 নির্বোধরা সহজেই হতাশ হয়ে পড়ে| বুদ্ধিমান লোকরা অপমানকে অগ্রাহ্য করে| 17 সত্যভাষীরা সর্বদাই বিশ্বাসযোগ্য| কিন্তু মিথ্যাবাদীরা অপরকে বিপদের দিকে ঠেলে দেয়| 18 য়ে ব্যক্তি চিন্তাভাবনা না করে কথাবার্তা বলে তার বাক্য তরবারির মত আঘাত করতে পারে| কিন্তু বিচক্ষণ ব্যক্তি কথা বলার সময় সজাগ থাকে| তাঁর বাক্য ঐ আঘাতের যন্ত্রণা মুছে দেয়| 19 য়ে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলে তার বাক্য ক্ষণস্থায়ী| কিন্তু সত্য চিরকালই অমর| 20 যারা অপরের বিরুদ্ধে কু-পরিকল্পনা করে তারা নিজেদেরই ঠকায়| যারা শান্তির জন্য কাজ করে তারা সুখী| 21 ঈশ্বর ধার্মিকদের সর্বদা রক্ষা করবেন| কিন্তু পাপীরা অসংখ্য় সমস্যায় পড়বে| 22 প্রভু মিথ্যাবাদীদের ঘৃণা করেন| তিনি সত্যবাদীদের প্রতি সন্তুষ্ট| 23 বুদ্ধিমান লোকরা যা জানে কখনও তার সবটা বলে না| কিন্তু এক জন নির্বোধ ব্যক্তি, সে যা জানে সবই বলে দিয়ে নিজেকে মূর্খ প্রতিপন্ন করে| 24 কঠোর পরিশ্রমীদের অন্যান্য শ্রমিকদের দায়িত্বে রাখা হবে| কিন্তু য়ে অলস তাকে চির কাল অন্যের দাসত্ব করে য়েতে হবে| 25 চিন্তা মানুষের সুখ ও আনন্দ কেড়ে নেয়| কিন্তু একটি দযা বত্সল শব্দ মানুষকে আনন্দিত করে| 26 বন্ধু নির্বাচনে এক জন ধার্মিক মানুষ বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়| কিন্তু একজন দুষ্ট ব্যক্তি সর্বদা ভুল বন্ধু নির্বাচন করে| 27 এক জন অলস ব্যক্তি কখনও তার য়ে জিনিস প্রয়োজন তার পেছনে ছোটে না| ধন আসে কঠিন পরিশ্রমীদের কাছে| 28 তুমি যদি সঠিক পথে জীবনযাপন কর তাহলে তুমি সত্য জীবন পাবে| ন্যায়পরাযণতার পথ জীবনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়|
1 এক জন জ্ঞানী পুত্র পিতার কথা মনোয়োগ দিয়ে শোনে| কিন্তু একজন অহঙ্কারী ব্যক্তি কারো কথা শোনে না| য়ে লোকরা তাকে সংশোধন করবার চেষ্টা করে সে তাদের কথা শোনে না| 2 ভালো লোকরা তাদের ভালো কথাবার্তার জন্য পুরস্কৃত হয়| কিন্তু দুষ্ট লোকরা সব সময় ভুল কাজ করতে চায়| 3 য়ে নিজের কথাগুলো সযত্নে রক্ষা করে সে তার জীবন রক্ষা করে| য়ে না ভেবে-চিন্তে কথা বলে সে তার নিজের ধ্বংস নিয়ে আসে| 4 অলস ব্যক্তিরা সর্বদা পাবার আকাঙ্খা করে কিন্তু তাদের আকাঙ্খা পূর্ণ হবে না| অথচ পরিশ্রমী ব্যক্তিরা যা চাইবে তাই তারা পেতে সক্ষম হবে| 5 সত্ লোকরা মিথ্যাকে ঘৃণা করে| দুর্জনরা লজ্জিত হবে| 6 ধার্মিকতা ভাল এবং সত্ মানুষকে রক্ষা করবে| কিন্তু য়ে সব লোক পাপ করতে ভালবাসে পাপ তাদের সর্বনাশ করে| 7 যাদের কিছু নেই তারা ধনী হওয়ার ভান করে| কিন্তু যারা সত্যিকারের ধনী তারা নিজেদের দরিদ্র বলে পরিচয় দেয়| 8 জীবন রক্ষার জন্য একজন ধনীকে হয়ত অনেক মূল্য দিতে হবে| কিন্তু গরীব লোকরা কখনও সেরকম হুমকি পায় না| 9 এক জন ভালো লোকের আলো হাসিকে উজ্জ্বল করে| দুষ্ট লোকের প্রদীপ বিষাদে পরিণত হয়| 10 যারা নিজেদের অন্যদের থেকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে তারাই সংকটের কারণ হয়| কিন্তু যারা অন্যদের উপদেশ গ্রহণ করে তারা জ্ঞানী| 11 যারা পয়সার জন্য ঠকায়, তারা শীঘ্রই সব পয়সা হারাবে| কিন্তু পরিশ্রমের বিনিময়ে যারা অর্থ রোজগার করে তাদের অর্থ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পায়| 12 আশা যদি ক্রমাগত দূরে সরে য়েতে থাকে তাহলে হৃদয় দুঃখিত হয়| আকাঙ্খিত বস্তু পাওয়া জীবন বৃক্ষের মত| 13 য়ে ব্যক্তি আদেশকে অবজ্ঞা করে সে ধ্বংস হয়| য়ে ব্যক্তি আদেশকে শ্রদ্ধা করবে সে পুরস্কৃত হবে| 14 জ্ঞানী ব্যক্তিদের শিক্ষামালা জীবনের সন্ধান দেয়| ঐ কথাগুলি তোমাকে মৃত্যু ফাঁদ এড়িয়ে য়েতে সাহায্য করবে| 15 সত্ উদ্দেশ্যসমূহ গৌরব আনে| প্রতারণা নিয়ে আসে তার নিজস্ব পুরস্কার| 16 এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি কোন কাজ করার আগে চিন্তাভাবনা করে| কিন্তু এক জন নির্বোধ তার কাজকর্মের মাধ্যমে নিজের বোকামির পরিচয় দেয়| 17 বিশ্বাস করা যায় না এমন দূত অনেক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে| কিন্তু এক জন বিশ্বাসী দূত আরোগ্য নিয়ে আসে| 18 য়ে নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নেয় না সে অচিরেই গরীব হয় ও লজ্জিত বোধ করে| কিন্তু য়ে সংশোধন গ্রহণ করে সে লাভবান হবে| 19 যদি কেউ কিছু চেয়ে তা পেয়ে যায় তাহলে সে খুব আনন্দিত হয়| কিন্তু নির্বোধ লোকরা তাদের অসত্ পথ থেকে সরে আসতে ঘৃণা বোধ করে| 20 জ্ঞানীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করো তাহলে তুমিও জ্ঞানী হয়ে উঠবে| কিন্তু যদি তুমি নির্বোধদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করো তাহলে সমস্যায় পড়বে| 21 দুঃখ দুর্দশা পাপীদের তাড়া করে বেড়ায়, কিন্তু ভালো লোকদের জীবনে ভাল ঘটনাই ঘটে| 22 এক জন সজ্জন ব্যক্তির যা সম্পদ থাকবে তা সে তার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের দিয়ে য়েতে পারবে| এবং পরিশেষে দুর্জনদের সব সম্পদও এক দিন সজ্জন ব্যক্তিদের আওতায চলে আসবে| 23 এক জন দরিদ্রের উর্বর জমি থাকতে পারে যা প্রচুর ফসল দেয়| কিন্তু ভুল সিদ্ধান্তের ফলে সে ক্ষুধার্ত থাকে| 24 য়ে নিজের সন্তানদের সত্যিকারের ভালোবাসে সে সন্তানদের ভুল ত্রুটিগুলো শুধরে দেয়| যদি তুমি তোমার পুত্রকে ভালবাসো তাহলে তাকে সঠিক পথে চলার শিক্ষা দাও| 25 ভালো লোকরা সব সময় প্রচুর পরিমাণে খেতে পাবে| কিন্তু দুর্জনরা ক্ষুধার্ত থেকে যাবে|
1 এক জন জ্ঞানী মহিলা তার জ্ঞান দিয়েই নিজের সংসার তৈরী করে| 2 য়ে প্রভুকে সম্মান করে সেই সঠিক পথে জীবনযাপন করে| কিন্তু একজন অসত্ লোক প্রভুকে ঘৃণা করে| 3 এক জন বোকা লোকের কথাবার্তা তার নিজের সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে| কিন্তু একজন জ্ঞানী লোকের কথাবার্তা তাঁকে রক্ষা করে| 4 চাষের কাজে বলদের অভাব দেখা দিলে শস্যভাণ্ডার খালি থাকবে| বৃহত্ ফলনের জন্য মানুষ বলদের শক্তিকে ব্যবহার করতে পারে| 5 এক জন সত্যবাদী কখনও মিথ্যে বলে না এবং সে একজন সাক্ষী হতে পারে| কিন্তু একজন অবিশ্বাসী লোক কখনও সত্যি বলে না এবং সে ভাল সাক্ষী হতে পারে না| 6 উদ্ধত লোকরা জ্ঞানের অন্বেষণ করতে পারে কিন্তু তারা কখনও তা খুঁজে পাবে না| কিন্তু য়ে সব লোকদের বোধ শক্তি আছে তারা তাড়াতাড়ি শিখতে পারে| 7 বোকাদের কাছ থেকে কিছুই শেখার নেই তাই বোকাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব কোরো না| 8 এক জন বিচক্ষণ ও দক্ষ লোকের জীবনযাত্রা নিরীক্ষণ কর| কিন্তু এক জন বোকা লোকের আঁকা-বাঁকা জীবন পথ প্রতারণাপূর্বক| 9 বোকা লোকরা তাদের বোকামির মাশুল দিতে গিয়ে হাসাহাসি করে| কিন্তু সত্ লোকরা শীঘ্রই ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়| 10 এক জন দুঃখী লোক শুধুই তার নিজের দুঃখ অনুভব করতে পারে| ঠিক তেমনি, কেউই অন্য লোকের হৃদয়ের অন্তঃস্থলের আনন্দে ভাগ বসাতে পারে না| 11 দুর্জনদের গৃহগুলির বিনাশ হবেই| কিন্তু সত্ লোকদের বাড়ীগুলি উন্নতি করবে| 12 একটি সহজ রাস্তাকেসঠিক রাস্তা বলে মনে হতে পারে কিন্তু সেটি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়ে য়েতে পারে| 13 বিষাদে পূর্ণ একটি লোক হাসতে পারে, কিন্তু হাসি থামবার পরে দুঃখ আবার ফিরে আসে| 14 মন্দ কাজের জন্য পাপীদের পুরোদস্তুর শাস্তি ভোগ করতে হবে এবং ভালো কাজের জন্য সজ্জনরা পুরস্কৃত হবেই| 15 এক জন মূর্খ যা শোনে তাই বিশ্বাস করে| কিন্তু এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি যা কিছু শোনে তা তার বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে| 16 এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি মন্দকে ভয় পায় এবং তাকে এড়িয়ে চলে| কিন্তু এক জন বোকা লোক দৃঢ়তার সঙ্গে কুকর্মের মধ্যে ঝাঁপিযে পড়ে| 17 য়ে সব লোক খুব সহজেই রেগে যায় তারা নির্বোধের মত আচরণ করে| কিন্তু জ্ঞানীরা হয় ধৈর্য়্য়শীল| 18 নির্বোধরা তাদের বোকামির জন্য শাস্তি পায়| কিন্তু জ্ঞানীরা তাঁদের জ্ঞানের জন্য পুরস্কৃত হয়| 19 দুর্জনদের বিরুদ্ধে সজ্জনদের জয় হবেই| দুর্জনরা সজ্জনদের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হবেই| 20 দরিদ্রদের কোন বন্ধু ও প্রতিবেশী জোটে না কিন্তু ধনীরা বন্ধু-বান্ধব দ্বারা পরিবৃত হয়ে থাকে| 21 তোমার প্রতিবেশীদের ঘৃণা করো না| যদি সুখী হতে চাও তাহলে দরিদ্রদের প্রতি সদয থাকো| 22 যদি কেউ খারাপ কাজ করার ফন্দি আঁটে তাহলে সে ভুল করবে| কিন্তু য়ে ভালো কাজ করার চেষ্টা করবে সে বন্ধু পাবে, সবাই তাকে ভালোবাসবে ও বিশ্বাস করবে| 23 কঠিন পরিশ্রম সব সময় কিছু লাভ আনবে| কিন্তু তুমি যদি কোন কাজ না করে শুধু কথা বল তাহলে তুমি দরিদ্র হয়ে যাবে| 24 জ্ঞানীরা সম্পদ দ্বারা পুরস্কৃত হয়| কিন্তু মুর্খরা পুরস্কৃত হয় বোকামির দ্বারা| 25 য়ে সত্য বলে সে মানুষকে সাহায্য করে আর য়ে মিথ্যে বলে সে অন্যদের আঘাত করে| 26 য়ে প্রভুকে সম্মান করে সে সুরক্ষা পায় এবং তার সন্তানরাও নিরাপদ থাকে| 27 প্রভুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন সত্য জীবন নিয়ে আসে| এতে একটি ব্যক্তির জীবন মৃত্যুর ফাঁদ থেকে রক্ষা পায়| 28 যদি কোন রাজা অনেক মানুষকে শাসন করে তাহলে সে মহান| কিন্তু রাজার রাজ্যে যদি কোন মানুষ না থাকে তাহলে সেই রাজার কোন মূল্যই থাকে না| 29 ধৈর্য়্য়শীল এক জন মানুষ ভীষণ সপ্রতিভ হয়| আর য়ে সহজে রেগে যায় সে তার মূর্খামির প্রমাণ দেয়| 30 মানসিক শান্তি দৈহিক স্বাস্থ্য়ের উন্নতি করে| কিন্তু অন্যের প্রতি হিংসা শরীরকে রোগগ্রস্ত করে তোলে| 31 ঈশ্বরই প্রত্যেক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন| তাই যারা গরীবদের জন্য সংকটের সমস্যা সৃষ্টি করে তারা দরিদ্রদের সৃষ্টিকর্তাকে অপমান করে| যারা গরীবদের দযা দেখায় তারা ঈশ্বরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে| 32 এক জন দুষ্ট লোক তার কু-কর্মের দ্বারা পরাজিত হয়| কিন্তু এক জন ভালো লোক তার মৃত্যুর সময়ও জিতে যায়| 33 জ্ঞানীরা সব সময় জ্ঞানসম্মত ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে| কিন্তু মূর্খরা জ্ঞানেরকিছুই জানে না| 34 ভালোত্ব একটি দেশকে মহান করে তোলে| কিন্তু পাপ য়ে কোন মানুষকে লজ্জিত করে| 35 জ্ঞানী আধিকারিক পেলে রাজা সুখী হন| কিন্তু মূর্খ নেতাদের প্রতি রাজা ক্রুদ্ধ হন|
1 একটি শান্ত উত্তর ক্রোধকে প্রশমিত করে| কিন্তু কর্কশ উত্তর সেই ক্রোধকে আরও বাড়ায| 2 যখন কোন জ্ঞানী ব্যক্তি কিছু বলে তখন অন্যরা তার কথা শুনতে চায়| কিন্তু একজন মূর্খ শুধু বোকা বোকা কথাই বলে| 3 প্রভু কোথায় কি ঘটছে সব দেখতে পান| তিনি ভালো ও মন্দ প্রত্যেকের ওপর সমানভাবে নজর রাখেন| 4 দযার বচন হল জীবনবৃক্ষের মত| কিন্তু মিথ্যে কথা মানুষের আত্মাকে তছনছ করে দিতে পারে| 5 মূর্খ ব্যক্তি পিতার উপদেশ শুনতে অগ্রাহ্য করে| কিন্তু একজন জ্ঞানী ব্যক্তি মন দিয়ে অন্যদের সব কথা শোনে| 6 ভালো লোকদের বাড়ীতে অনেক ধন থাকে, কিন্তু দুষ্ট লোকদের আয সংকট আনে| 7 জ্ঞানীরা তোমাকে নতুন তথ্যের সন্ধান দেবে| কিন্তু মূর্খের কথা শুনে কোন লাভ হবে না| 8 দুর্জনদের নৈবেদ্যকে প্রভু ঘৃণা করেন| কিন্তু সজ্জনদের প্রার্থনা শুনে প্রভু খুশী হন| 9 দুর্জনদের জীবনধারাকে প্রভু ঘৃণা করেন| যারা অন্যের ভাল করতে চায় তাদের প্রভু ভালবাসেন| 10 য়ে জ্ঞানের পথ পরিত্যাগ করবে তার শাস্তি হবে| য়ে নিজেকে অপরের দ্বারা শোধরাতে অস্বীকার করে তার বিনাশ হবে| 11 প্রভু সব জানেন| এমনকি মৃত্যুর সময়ও কি ঘটে তাও তিনি জানেন| সুতরাং একথা সত্যি য়ে প্রভু মানুষের মনের এবং হৃদয়ের কথাও জানতে পারেন| 12 উদ্ধত লোকরা জ্ঞানী লোকদের দ্বারা সংশোধিত হতে ঘৃণা করে| তারা জ্ঞানী লোকদের সঙ্গে মিলিত হয় না| 13 সুখী ব্যক্তির মুখে আনন্দের চিহ্ন লেগে থাকে| কিন্তু যদি কেউ হৃদয়ে দুঃখী হয় তাহলে আত্মাও দুঃখকেই প্রকাশ করে| 14 জ্ঞানীরা আরও বেশী জ্ঞান আহরণ করতে চায়| কিন্তু মূর্খরা আরও মূর্খ হতে চায়| 15 কিছু গরীব মানুষ সবসময় দুঃখী থাকে| কিন্তু যাদের হৃদয় রযেছে আনন্দ তাদের জীবন হচ্ছে একটি অব্যাহত উত্সবের মত| 16 ধনী হয়ে নানান যন্ত্রণায জর্জরিত হওয়ার চেয়ে দরিদ্র হওয়া এবং প্রভুকে সম্মান করা শ্রেয়| 17 ঘৃণার সংসারে প্রচুর খাদ্য খাওয়ার থেকে ভালোবাসার সংসারে অল্প খেয়ে থাকা ভালো| 18 রগচটা মানুষ সমস্যা সৃষ্টি করে কিন্তু ধৈর্য়্য়শীল মানুষ শান্তি ফিরিয়ে আনে| 19 অলসদের সর্বত্র সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়| কিন্তু সত্ ব্যক্তিদের জীবন খুবই সহজ হয়| 20 জ্ঞানী পুত্র তার পিতাকে সুখ এনে দেয়| কিন্তু মূর্খ পুত্র তার মাকে শুধু লজ্জা এনে দেয়| 21 মূর্খরা মূর্খামিতে আনন্দ পায়| কিন্তু জ্ঞানীরা বিবেচনা করে সঠিক কাজ করে| 22 যদি কেউ পর্য়াপ্ত উপদেশ না পায় তাহলে তার পরিকল্পনা খাটে না| কিন্তু কেউ যদি জ্ঞানীদের কথা শুনে চলে তাহলে তার পরিকল্পনা সাফল্য লাভ করবে| 23 এক জন লোক তার ভাল উত্তরে খুশী হয়| সঠিক সময় সঠিক উত্তর দেওয়াটা খুব ভালো| 24 এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি যা কিছু করে তা তাকে জীবনের পথে এগিয়ে দেয় এবং তাকে মৃত্যুর স্থলের দিকে নীচে নামা থেকে বিরত করে| 25 অহঙ্কারীর সব কিছু প্রভু ধ্বংস করে দেবেন| কিন্তু এক জন বিধবা মহিলার সব কিছু প্রভু রক্ষা করবেন| 26 অসত্ চিন্তাকে প্রভু ঘৃণা করেন| কিন্তু দয়ালু কথা প্রভু ভালোবাসেন| 27 য়ে অন্যদের ঠকায় তার পরিবার অচিরেই সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়বে| কিন্তু যদি কেউ সত্ থাকে তাহলে তার জীবনে কোন সমস্যা আসবে না| 28 সজ্জন ব্যক্তিরা উত্তর দেবার আগে চিন্তা করে উত্তর দেয়| কিন্তু দুর্জনরা কোন কিছু না ভেবেই উত্তর দেয় যা তাদের সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে| 29 মন্দ লোকদের থেকে প্রভু অনেক দূরে থাকেন কিন্তু ভালো মানুষদের প্রার্থনা প্রভু শোনেন| 30 একটি আনন্দময় মুখ অন্য লোকদের খুশী করে এবং শুভ সংবাদ মানুষকে ভালো বোধ করায়| 31 কেউ ভুল শুধরে দিতে চাইলে তা যদি কেউ মন দিয়ে শোনে তাহলে সেই হচ্ছে আসল জ্ঞানী| 32 যদি এক জন ব্যক্তি অনুশাসন অস্বীকার করে, সে নিজেরই ক্ষতি করছে| কিন্তু সে যদি অপরের দ্বারা সংশোধিত হওয়াকে গ্রহণ করে তাহলে সে বোধশক্তি লাভ করে| 33 প্রভুকে সম্মান প্রদর্শন জ্ঞানের পথ নির্দেশক| শ্রদ্ধা পাবার আগে এক জনকে বিনয়ী হতে হবে|
1 মানুষ তার চিন্তা-ভাবনাকে ঠিকমত সাজিয়ে একটি পরিকল্পনা করতে পারে, কিন্তু প্রভুর হাতে জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করবার ক্ষমতা আছে| 2 লোকরা মনে করে তারা যা করে সেটাই ঠিক, কিন্তু প্রভু তাদের আত্মা পরীক্ষা করেন| 3 সব সময় প্রভুর সাহায্য নেবে তাহলেই তুমি সফল হবে| 4 সমস্ত বিষয়েই প্রভুর পরিকল্পনা আছে এবং সেই পরিকল্পনা অনুসারে মন্দ লোকের বিনাশ হবে| 5 য়ে সমস্ত লোক ভাবে তারা অন্য লোকের তুলনায় শ্রেয় প্রভু তাদের ঘৃণা করেন| প্রভু নিশ্চয়ই সেই সমস্ত অহঙ্কারী মানুষকে শাস্তি দেবেন| 6 সত্যিকারের ভালোবাসা ও বিশ্বস্ততা তোমাকে খাঁটি করে তুলবে| ঈশ্বরের প্রকৃত প্রেম এবং বিশ্বস্ততার দরুণ অপরাধ মুছে ফেলা যায় কিন্তু প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধার মাধ্যমে আমরা মন্দকে এড়িয়ে চলি| 7 যদি কোন ব্যক্তি ভালো ভাবে জীবনযাপন করে সে প্রভুর কাছে মনোরম হয় এবং তার শত্রুরাও তার সঙ্গে শান্তি রক্ষা করে চলে| 8 ঠকিয়ে প্রচুর লাভ করা অপেক্ষা সঠিক পথে সামান্য লাভ করাও শ্রেয়| 9 এক জন ব্যক্তি কি করতে চায় তা নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারে কিন্তু বাস্তবে কি ঘটবে তা নির্ধারণ করবেন প্রভু| 10 এক জন রাজা যা বলেন সেটাই হয় আইন| তাই তার সিদ্ধান্ত সর্বদা সঠিক হওয়া উচিত্| 11 প্রভু চান সমস্ত মাপকাঠি এবং মাত্র সঠিক হোক এবং ব্যবসায়িক চুক্তিগুলি নিয়মানুযাযী হোক্| 12 যারা মন্দ কাজ করে রাজা তাদের ঘৃণা করেন| ধার্মিকতা তাঁর রাজ্য়কে প্রতিষ্ঠা করবে| 13 রাজা সত্য ভাষণ শুনতে চান| যারা মিথ্যা বলে না রাজা তাদের পছন্দ করেন| 14 এক জন রাজা রেগে গেলে য়ে কোন লোককে হত্যা করতে পারেন| য়ে জ্ঞানী সে রাজাকে খুশী রাখার চেষ্টা করবে| 15 যদি রাজা খুশী থাকেন তবে সবার জীবনই সুখের হবে| যদি রাজা তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হন তাহলে তা হবে বসন্তকালে বৃষ্টি হওয়ার মতো| 16 জ্ঞানের মূল্য সোনার চেয়েও বেশী| বিচক্ষণতার মূল্য রূপোর চেয়েও বেশী| 17 ভালো লোকরা সারা জীবন খারাপ জিনিস থেকে দূরত্ব রেখে চলে| য়ে ব্যক্তি সাবধানী সে তার আত্মাকে রক্ষা করে চলে| 18 অহংকার ধ্বংসকে এগিয়ে আনে এবং ঔদ্ধত্য পরাজয় আনে| 19 উদ্ধত লোকদের সঙ্গে ধনসম্পদ ভাগ করে নেওয়ার চেয়ে বিনযী হওয়া এবং দরিদ্রদের মধ্যে থাকা শ্রেয়| 20 য়ে ব্যক্তি অপরের কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে সে লাভবান হবে| য়ে প্রভুর ওপর বিশ্বাস রেখে চলে সে প্রভুর আশীর্বাদ পাবে| 21 জ্ঞানী লোকদের মানুষ চিনে নেবে| য়ে বিচক্ষণ ভাবে কথা বলে তার কথায় অনেক বেশী ফল হয়| 22 এক জন জ্ঞানী মানুষ সব সময় চিন্তা করে কথা বলে| এবং সে যা বলে তা শোনার যোগ্য| 23 এক জন বিজ্ঞ ব্যক্তি সব সময়ই চিন্তাপূর্ণ কথা বলে এবং সে যা কিছু বলে তা শোনার পক্ষে ভাল ও মূল্যবান| 24 দযালু কথাবার্তা সব সময়ই মধুর মত মিষ্টি| দযালু কথাবার্তা গ্রহণযোগ্য ও স্বাস্থ্য়ের পক্ষে ভালো| 25 এমন পথ আছে যা লোকের কাছে সঠিক বলে মনে হলেও তা শুধু মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়| 26 এক জন শ্রমিকের ক্ষুধাই তাকে কাজ করায যাতে সে খেতে পায়| 27 এক জন অপদার্থ দুষ্ট লোক অন্যায় কাজের পরিকল্পনা করে| তার উপদেশ আগুনের মতই ধ্বংসকারী| 28 এক জন সমস্যা সৃষ্টিকারী সব সময় সমস্যার সৃষ্টি করবে| সে গুজব ছড়িয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে অশান্তির কারণ ঘটাবে| 29 এক জন হিংসাত্মক ব্যক্তি তার বন্ধুদের প্রতারণা করে| সে তাদের বিপথে চালিত করবে| 30 সে যখনই কোন ধ্বংসকারী পরিকল্পনা করে তখন তার চোখ মিটমিট করে| সে তার প্রতিবেশীকে আঘাত করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হাসিমুখে থাকে| 31 যারা সত্ জীবনযাপন করে সাদা চুল তাদের মহিমার মুকুট হয়| 32 এক জন বলিষ্ঠ যোদ্ধা হওয়ার থেকে ধৈর্য়্য়শীল হওয়া ভাল| একটি সম্পূর্ণ শহরের দখল নেওয়ার চেয়ে নিজের রাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ পাওয়া শ্রেয়| 33 মানুষ পাশার দান চেলে তাদের সিদ্ধান্ত স্থির করে| কিন্তু সিদ্ধান্ত সব সময় ঈশ্বরের কাছ থেকেই আসে|
1 অশান্তির মধ্যে ঘরভর্তি খাবারের চেয়ে শান্তির মধ্যে একটুকরো শুকনো রুটি খাওয়া অনেক ভাল| 2 এক জন বুদ্ধিমান ভৃত্য তার প্রভুর বোকা ছেলের ওপর শাসন চালাবে| এই ভাবে সে তার প্রভুর সম্পত্তির কিছুটা ভাগ প্রভুর অন্য পুত্রদের সঙ্গে পাবে| 3 সোনা ও রূপোকে খাঁটি করার জন্য আগুনে পোড়ানো হয়| কিন্তু ঈশ্বরই সেই ব্যক্তি যিনি মানুষের হৃদয়কে শুদ্ধ করেন| 4 এক জন দুষ্ট লোক মন্দ কথাটাই শোনে| মিথ্যেবাদীরা মিথ্যে কথাগুলোই শোনে| 5 কিছু মানুষ আছে যারা গরীব মানুষদের দুর্দশা উপভোগ করে| বিপদে পড়া মানুষদের সমস্যা নিয়ে তারা হাসাহাসি করে| এতে এই বোঝা যায় য়ে এই দুষ্ট লোকরা ঈশ্বরকে সম্মান করে না যিনি দরিদ্রদের সৃষ্টিকর্তা| তারা শাস্তি পাওয়ার যোগ্য| 6 পৌত্র-পৌত্রীরা তাদের প্রপিতামহ এবং প্রপিতামহীদের কাছে একটি মুকুট এবং সন্তানদের কাছে তাদের পিতা-মাতা একটি গৌরব| 7 বোকাদের বেশী কথা বলা অনুচিত্, ঠিক তেমনি কোন শাসকেরও মিথ্যাচার করা উচিত্ নয়| 8 কিছু লোক উত্কোচকে সৌভাগ্য বলে বিবেচনা করে| তারা ভাবে য়ে সব ক্ষেত্রেই সেটা তাদের সাফল্য আনবে| 9 যদি কারোর অন্যায়কে তুমি ক্ষমা করতে পারো তাহলে সে তোমার বন্ধু হতে পারে| কিন্তু যদি তুমি তার অন্যায়কে বারবার মনে কর তাহলে বন্ধুত্বের ক্ষতি হবে| 10 এক জন বুদ্ধিমান মানুষ তার ভুল থেকে শিক্ষা নেয় কিন্তু এক জন নির্বোধ তার ভুল থেকে শিক্ষালাভ করে না| এমন কি 100 ঘা চাবুক খাবার পরেও নয়| 11 এক জন দুষ্ট ব্যক্তি সব সময় ভুল কাজ করতে চেষ্টা করে| শেষে, তাকে শাস্তি দেবার জন্য ঈশ্বর এক জন নিষ্ঠুর দূত পাঠাবেন| 12 শাবক চুরি হয়ে যাওয়া ক্রুদ্ধ মা ভালুকের সম্মুখীন হওয়া সর্বদা বিপজ্জনক| কিন্তু তবু, এক জন নির্বোধের নির্বুদ্ধিতার সম্মুখীন হওয়ার থেকে তা শ্রেয়| 13 তোমার প্রতি কৃত কোন ভালো কাজের জন্য অসত্ভাবে তার প্রতিদান দিও না| যদি তুমি এরকম কর তাহলে তুমি সারা জীবন সংকটের মধ্যে থাকবে| 14 বিবাদ হল বাঁধের গর্তের মতো| সেই গর্ত ক্রমশঃ বড় হওয়ার আগেই বিবাদ ত্যাগ করো| 15 প্রভু দুটো বিষয়কে ঘৃণা করেন| এক জন নির্দোষ ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া এবং দোষী ব্যক্তিকে ক্ষমা করা| 16 এক জন নির্বোধ ব্যক্তির কাছে অর্থ থাকার কোন মূল্য নেই| কারণ, তার যখন কোন বোধই নেই, সে কখনও জ্ঞান কিনতে পারবে না| 17 এক জন বন্ধু সব সময় ভালোবাসবে| এক জন সত্যিকারের ভাই সর্বদা তোমাকে সমর্থন করবে এমকি তোমার বিপদের সময়েও| 18 একমাত্র বোকারাই অন্য লোকের বিবাদের দায়িত্ব নেয়| 19 য়ে বিবাদে আনন্দ পায় সে পাপেও আনন্দ লাভ করে| যদি তুমি নিজেই নিজের বড়াই কর তাহলে তুমি সমস্যাকেই আহ্বান জানাবে| 20 দুর্জন ব্যক্তি কখনও লাভবান হয় না| মিথ্যাবাদীরা সমস্যায় জর্জরিত হবে| 21 এক জন পিতা নির্বোধ সন্তানের জন্য বিমর্ষ থাকে| একটি দুষ্ট সন্তানের পিতা অসুখী হয়| 22 আনন্দ হল একটি ভালো ওষুধের মত| কিন্তু দুঃখ হল অসুস্থতার মত| 23 দুর্জন ব্যক্তি অন্যদের ঠকানোর জন্য ঘুষ নেয়| 24 জ্ঞানী ব্যক্তি সব সময় ভাল কাজ করার চিন্তা করেন| কিন্তু নির্বোধ ব্যক্তি সব সময় বহু দূরের স্বপ্ন দেখে| 25 এক জন নির্বোধ পুত্র তার পিতার জন্য দুঃখ বয়ে আনে| সে তার মায়ের তিক্ততার কারণ| 26 ঠিক য়েমন এক জন নির্দোষ ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া অন্যায়, তেমনি এক জন সত্যবাদী অথচ আধিকারিককে শাস্তি দেওয়াও অন্যায়| 27 এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি খুব বেশী কথা বলে না| সে কখনও সহজে ক্রুদ্ধ হয় না| 28 এক জন মূঢ় ব্যক্তি যদি চুপ করে থাকে তাহলে লোকে তাকে জ্ঞানী বলে বিবেচনা করবে| সে যদি কিছু না বলে তাকে বুদ্ধিমান মনে হবে|
1 য়ে লোকরা অন্য কারো সঙ্গে মিলে-মিশে থাকতে পারে না, তারা তাদের নিজেদের ইচ্ছেমত জিনিস চায়| তারা অন্য য়ে কোন উপদেশ বা পরামর্শে বিচলিত হয়| 2 এক জন নির্বোধ অন্যদের কাছ থেকে কিছু শিখতে চায় না| সে শুধু নিজের মনের কথাই প্রকাশ করতে সচেষ্ট থাকে| 3 মানুষ এই ধরণের দুর্জনকে পছন্দ করে না| তারা বোকাদের নিয়ে উপহাস করে| 4 জ্ঞানী ব্যক্তির উচ্চারিত শব্দ হল গভীর কুযো থেকে উঠে আসা স্রোতবাহী জলের মতো য়ে কুয়ো হল জ্ঞানের আধার| 5 তোমাকে মানুষের সঠিক বিচার করতে হবে| যদি তুমি দোষী ব্যক্তিদের ছেড়ে দাও তাহলে তুমি সজ্জন ব্যক্তিদের সঙ্গে ন্যায় করলে না| 6 এক জন নির্বোধ ব্যক্তি নিজের কথার দ্বারাই নিজের সংকট বাধিযে বসে| তার মুখের কথায় ঝগড়া শুরু হতে পারে| 7 তার মুখই তার ধ্বংসের কারণ হয়ে ওঠে| সে নিজেই নিজের কথার জালে জড়িয়ে পড়ে| 8 মানুষ সব সময় কেচ্ছা শুনতে ভালোবাসে| কেচ্ছাকাহিনীকে সুখাদ্যের মতো গিলতে থাকে| 9 কুকর্মে য়ে লিপ্ত থাকে তার সঙ্গে বিনাশকারীর কোন পার্থক্য নেই| 10 প্রভুর নাম হল একটি শক্তিশালী মিনারের মত| ভালো লোকরা প্রভুর কাছে আশ্রয়ের জন্য ছুটে য়েতে পারে| 11 ধনীরা ভাবে তাদের অর্থই তাদের রক্ষা করবে| তারা ভাবে তাদের অর্থ হল দুর্ভেদ্য দুর্গের মতো অটুট| 12 অহঙ্কারী ব্যক্তির বিনাশ হবে কিন্তু বিনযী ব্যক্তি সম্মানিত হবে| 13 অন্যদের কথা শেষ করতে দেওয়ার পর তুমি উত্তর দিতে শুরু করবে| যদি তুমি এরকম কর তাহলে তুমি অপ্রস্তুত হবে না অথবা তোমাকে বোকার মত দেখতে লাগবে না| 14 অসুস্থতার সময়ে এক জন মানুষের মস্তিষ্ক তাকে জীবিত রাখবে| কিন্তু সে যদি গভীর ভাবে উদাস হয়ে যায়, তার কোন আশা থাকে না| 15 জ্ঞানী ব্যক্তি আরো বেশী জানার ইচ্ছে প্রকাশ করে| 16 তুমি যদি গুরুত্বপূর্ণ লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করবার আগে তাদের উপহার দাও, তাহলে তাদের সঙ্গে দেখা করবার ব্যবস্থা সহজ হয়| 17 প্রথম ব্যক্তির মামলা ততক্ষণ পর্য়ন্ত ঠিক থাকে যতক্ষণ না তাকে দ্বিতীয় ব্যক্তি পাল্টা প্রশ্ন করে| 18 শক্তিশালী বিরোধী দলগুলির বিবাদ পাশার দান ফেলে মেটানো যায়| 19 তুমি যদি তোমার বন্ধুকে অপমান কর তাহলে পুনরায় তার মন জয় করা দুর্ভেদ্য প্রাচীর ঘেরা শহর জয় করার থেকেও কঠিন হবে| প্রাসাদের ফটকগুলির ওপর আড়াআড়ি ভাবে রাখা শক্তিশালী খিলগুলির মত তর্ক মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে| 20 তুমি যা বলবে তাই তোমার জীবনের ওপর প্রভাব ফেলবে| তুমি যদি ভাল কথা বল তাহলে তোমার জীবনে ভালো ঘটনা ঘটবে| আর যদি তুমি খারাপ কথা বলো তাহলে তোমার জীবনে খারাপ ঘটনা ঘটবে| 21 জিহ্বা এমন কথা বলতে পারে যা জীবন অথবা মৃত্যু আনে| যারা কথা বলতে ভালোবাসে তাদের কথার দরুন যা পরিনাম হতে পারে সে সম্বন্ধে তাদের অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে| 22 যদি তুমি তোমার জীবনসঙ্গিনী খুঁজে পাও তাহলে মনে করবে তুমি কোন ভাল জিনিসই পেয়েছো| তোমার স্ত্রী তোমাকে দেখাবে য়ে প্রভু তোমাকে নিয়ে সুখী| 23 এক জন গরীব ব্যক্তি সাহায্য ভিক্ষা করবে কিন্তু এক জন ধনী ব্যক্তি খারাপ ভাবে তাকে উত্তর দেবে| 24 কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গ আনন্দদাযক| কিন্তু এক জন সত্যিকারের বন্ধু ভাইযের চেয়েও বিশ্বস্ত হতে পারে|
1 বোকা, মিথ্যেবাদী এবং ঠগ হওয়ার চেয়ে গরীব এবং সত্ হওয়া শ্রেয়| 2 জ্ঞান ব্যতিরেকে উদ্যম কোন কাজের নয়| য়ে ব্যক্তি তাড়াহুড়ো করে কাজ করে, সে ভুল করে| 3 এক জন ব্যক্তির নিবুর্দ্ধিতা তার ধ্বংসের কারণ| কিন্তু সে তার দুরবস্থার জন্য প্রভুকে দোষী করে| 4 ধনী ব্যক্তির ধন-সম্পদই অসংখ্য় বন্ধু জোগাড় করে দেয় কিন্তু দরিদ্রকে সবাই ছেড়ে চলে যায়| 5 অন্য লোকের বিরুদ্ধে য়ে মিথ্যাচার করে তার শাস্তি হওয়া উচিত্| তার রক্ষা পাওয়া উচিত্ নয়| 6 উদার ব্যক্তির বন্ধু সবাই হতে চায়| য়ে উপহার প্রদান করে তার বন্ধুত্ব লাভে সবাই আগ্রহী| 7 যদি কেউ গরীব হয় তাহলে তার পরিবারের লোকরাও তার বিরোধিতা করে এবং সমস্ত বন্ধুরাও তার দিক থেকে মুখ ফিরিযে নেয়| সে সাহায্য ভিক্ষা করলে সাহায্য প্রদানের জন্য কেউ তার দিকে এগিয়ে যাবে না| 8 কোন ব্যক্তি যদি তার স্বাচ্ছন্দের জন্য আগ্রহী হয়, সে জ্ঞানী হয়ে ওঠার জন্য কঠোর পরিশ্রম করবে| য়ে বোধকে রক্ষা করে, সে সাফল্য হাতে পায়| 9 মিথ্যেসাক্ষীর শাস্তি হবেই! মিথ্যেবাদীর বিনাশ হবে| 10 এক জন নির্বোধ ব্যক্তির পক্ষে বিলাসিতার মধ্যে জীবনযাপন করা ঠিক নয়| তাহলে তা হবে ক্রীতদাস কর্ত্তৃক রাজপুত্রদের শাসন করা| 11 যদি এক জন ব্যক্তি জ্ঞানী হয়, সেই জ্ঞানই তাকে ধৈর্য়্য়ের অধিকারী করে| সে যদি তার বিরুদ্ধে যারা অন্যায় করে সেই সব লোকদের ক্ষমা করে সেটা তার মহত্ত্ব| 12 রাজার ক্রোধ হবে সিংহের মতো| কিন্তু তাঁর দযা হল ঘাসের ওপর বৃষ্টির ফোঁটার মত| 13 এক জন নির্বোধ তার পিতার জন্য বয়ে আনে সমস্যার বন্যা| এক জন খুঁতখুঁতে বউ হল সমানে চুঁইযে পড়া জলের মত| 14 লোকে তাদের মাতা-পিতার কাছ থেকে অর্থ এবং ঘরবাড়ি পায়| কিন্তু এক জন ভালো স্ত্রী হল প্রভুর দান| 15 এক জন কুঁড়ে, অলস ব্যক্তি হয়ত দীর্ঘক্ষণ ঘুমোতে পারে কিন্তু সে অত্যন্ত ক্ষুধার্ত বোধ করবে| 16 কেউ যদি আইনকে মান্য করে তাহলে সে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে| য়ে নিজের আচরণ সম্পর্কে অসতর্ক সে মারা যাবে| 17 দরিদ্রকে টাকা দেওয়া মানে তা প্রভুকে ঋণ দেওয়া| তোমার এই দযালু মনের জন্য প্রভু তোমাকে তা ফিরিযে দেবেন| 18 তোমার পুত্র বদলাবে এ আশা যতক্ষণ আছে, তাকে শাসন কর| তাকে শাসন না করে তার মৃত্যু এনো না| সে নিজেই তার ধ্বংসের কারণ হবে এবং তুমিই তাতে ইন্ধন য়োগাবে| 19 রগচটা লোক তার ক্রোধের মূল্য দেবে| তুমি যদি তাকে সংকট থেকে বের করেও আনো, সে একই কাজ করা অব্যাহত রাখবে| 20 উপদেশ শোন এবং শৃঙ্খলা পরাযণ হও| তাহলে জ্ঞানী হয়ে উঠবে| 21 মানুষ অসংখ্য় পরিকল্পনা করে কিন্তু একমাত্র প্রভুর পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হয়| 22 লোক একটি বিশ্বাসী লোক চায়| এক জন লোক যার কথা কেউ বিশ্বাস করে না সেই ধরণের একজন মানুষ হওয়ার চেয়ে বরং গরীব হওয়া শ্রেয়| 23 য়ে ব্যক্তি প্রভুকে সম্মান করে তার জীবন ভালো হয়| সে ক্ষযক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকে| সে তার নিজের জীবনে তৃপ্তি খুঁজে পায়| 24 কিছু মানুষ এতো অলস হয় য়ে তারা নিজেদের দিকে প্রায় নজরই দেয় না| তারা এতই অলস য়ে তারা তাদের থালা থেকে খাবারটুকু পর্য়ন্ত তুলে মুখে দেবে না| 25 এক জন অলস ব্যক্তিকে শাস্তি দাও এবং সেই বোকাটা কৌশলী হয়ে উঠবে| কিন্তু এক জন জ্ঞানী ব্যক্তিকে তিরস্কার কর, সে আরো বিচক্ষণ হয়ে উঠবে| 26 য়ে ব্যক্তি তার পিতার পকেট থেকে চুরি করে এবং তার মাকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়, সে এক জন জঘন্য কুলাঙ্গার| 27 যদি তুমি নির্দেশ মেনে চলা বন্ধ করো তাহলে তুমি তোমার বোকামিগুলো চালিযে যাবে| চির দিন ভুলগুলো করে যাবে| 28 য়ে মিথ্যে সাক্ষী দেয় সে ন্যায়কে উপহাস করে| দুষ্ট লোকদের কথাবার্তা আরো বেশী পাপ আনে| 29 উদ্ধত লোকদের জন্য চাবুকই য়থেষ্ট, কিন্তু বোকাদের জন্য প্রহার যথার্থ|
1 দ্রাক্ষারস খেলে মানুষ তার নিয়ন্ত্রণ হারায| মাতালরা চিত্কার করে এবং ঘ্য়ান ঘ্য়ান করতে শুরু করে| মদনোন্মত্ত অবস্থায় তারা মূর্খের মত আচরণ করে| 2 সিংহের গর্জনের মত রাজার ক্রোধ| তুমি যদি রাজাকে ক্রুদ্ধ করো তাহলে তোমার জীবন সংশয় হতে পারে| 3 মূঢ়রা তর্ক শুরু করবার ব্যাপারে খুব তত্পর| সুতরাং তোমাকে এমন এক জনকে সম্মান করতে হবে য়ে তর্ককে এড়িয়ে চলতে পারে| 4 এক জন অলস ব্যক্তি কর্ষনের সময় বীজ বপন করে না| সুতরাং ফসল ঘরে তোলার উত্সবের সময় যখন সে খাবারের জন্য চারিদিকে তাকায তখন সে কিছুই খুঁজে পায় না| 5 ভাল উপদেশ হল গভীর কুযো থেকে তুলে আনা স্বচ্ছ জলের মত| এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি অন্য আর একজনের কাছ থেকে শেখবার জন্য কঠিন পরিশ্রম করে| 6 অনেকেই বলে তারা বিশ্বস্ত এবং অনুগত| কিন্তু প্রকৃত বিশ্বস্ত লোক খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন| 7 এক জন সজ্জন ব্যক্তি সত্পথে জীবন কাটায়| এবং তার সন্তানরা আশীর্বাদ ধন্য হবে| 8 রাজা যখন বিচারে বসে তখন সে নিজের চোখে দুর্জন ব্যক্তিদের চিনতে পারে| 9 কেউ কি একথা বলতে পারে য়ে তার একটি স্বচ্ছ বিবেক আছে? এবং সে কোন পাপ করেনি? না! 10 অন্যায় ভাবে যারা ব্যবসায় ওজন নিয়ে কারচুপি করে লোক ঠকায়, প্রভু তাদের ঘৃণা করেন| 11 এমনকি একটি শিশুর কাজকর্মেও বোঝা যায় য়ে সে ভাল না মন্দ| তুমি যদি একটি শিশুর আচরণ লক্ষ্য কর, সে সত্ ও ভাল কিনা তা তুমি বুঝতে পারবে| 12 আমাদের শরীরের চোখ এবং কান এই ইন্দরিয় দুটি প্রভুই আমাদের দিয়েছেন যাতে আমরা দেখতে ও শুনতে পাই| 13 তুমি যদি ঘুমোনোর পিছনে সময় ব্যয় কর তাহলে তুমি দারিদ্রে কষ্ট পাবে| কিন্তু যদি তুমি তোমার সময় কঠোর পরিশ্রমে ব্যয় কর তাহলে তোমার খাদ্যের অভাব হবে না| 14 তোমার কাছ তেকে কেউ যখন কিছু কিনতে যায় তখন সে বলে: “দাম বড্ড বেশী! এ জিনিস ভাল নয়|” তারপর সে অন্যদের কাছে গিয়ে নিজের বাজার করার কথা বড়াই করে বলে| 15 সোনা এবং অলঙ্কার এক জন মানুষকে ধনী করে তুলতে পারে| কিন্তু একজন জ্ঞানী ব্যক্তি যা উচ্চারণ করেন তা অনেক বেশী দামী| 16 অন্য লোকের বিবাদে জড়িয়ে পড়লে তুমি তোমার জামা হারাতে পারো| 17 প্রতারণা করে জিনিস পাওয়া হয়তো ভালো মনে হতে পারে কিন্তু অবশেষে দেখবে য়ে তার কোন দাম নেই| 18 পরিকল্পনা করার আগে সত্ উপদেশ গ্রহণ করো| যদি তুমি যুদ্ধে যাওয়া স্থির কর, তাহলে তোমাকে চালনা করার জন্য যুদ্ধে দক্ষ এমন লোক খুঁজে বের কর| 19 য়ে অন্যের সম্বন্ধে গুজব রটায় সে বিশ্বাসযোগ্য নয়| সুতরাং, বেশী কথা বলে এমন কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব কোরো না| 20 য়ে নিজের পিতামাতার বিরুদ্ধে কথা বলে সে হল সেই ধরণের আলো যা শীঘ্রই অন্ধকারে পরিণত হবে| 21 সহজে অর্জিত ধন অবশেষে তার মূল্য হারাবে| 22 কেউ যদি তোমার বিরুদ্ধে কিছু করে থাকে তাহলে তুমি তাকে শাস্তি দিতে য়েও না| বরং ধৈর্য়্য় ধরো প্রভু শেষে তোমাকেই জয়ী করবেন| 23 কিছু ব্যবসাযী ওজনের দাঁড়িপাল্লায় কিছু কৌশল করে লোক ঠকায়| প্রভু সেটা ঘৃণা করেন| য়ে সব দাঁড়িপাল্লা নিখুঁত নয় সেগুলো ব্যবহার করা অন্যায়| 24 প্রতিটি লোকের কি হবে তা প্রভু ঠিক করেন| তাহলে কোন ব্যক্তি কি করে বুঝবে তার জীবনে কি কি ঘটবে? 25 ঈশ্বরকে কিছু দেবার প্রতিজ্ঞা করার আগে চিন্তা করে দেখো| নাহলে পরে হয়তো তুমি ভাবতে পারো য়ে এমন প্রতিজ্ঞা না করলেই হত| 26 জ্ঞানী রাজাই ঠিক করবেন কারা দুর্জন ব্যক্তি| সেই রাজাই তাদের শাস্তি প্রদান করবেন| 27 মানুষের আত্মা হল প্রভুর কাছে থাকা প্রদীপ| প্রভু হলেন অন্তর্য়ামী| কার মনে কি আছে তিনি সব জানেন| 28 যদি এক জন রাজা সত্ ও সত্যবাদী হয় তাহলে সে তার ক্ষমতায থাকতে পারবে| বিশ্বস্ততা তার রাজ্য়কে শক্তিশালী করে তুলবে| 29 এক জন যুবকের শক্তির শোভাকে আমরা পছন্দ করি| কিন্তু একজন বৃদ্ধের পাকা চুলকে আমরা সম্মান জানাই| কারণ তার মাথা ভর্তি পাকা চুল প্রমাণ করে য়ে সে একটি পূর্ণ জীবন পেয়েছে| 30 যদি আমরা শাস্তি পাই তাহলে আমরা অন্যায় কাজ করা বন্ধ করব| যন্ত্রণা মানুষকে বদলে দিতে পারে|
1 জমিতে চাষের জলের জন্য চাষীরা পরিখা খনন করে| সেচ ব্যবস্থার জন্য তারা পরিখা দিয়ে বয়ে যাওয়া জলের গতিপথ পরিবর্তন করে| তেমনি করে প্রভুও রাজার মনের নিয়ন্ত্রণ করেন| প্রভু রাজাকে তাঁর ইচ্ছেমতো পরিচালনা করেন| 2 মানুষ ভাবে সে যা করে তাই সঠিক| কিন্তু প্রভুই মানুষের কাজের সঠিক কারণের বিচার করেন| 3 সঠিক কাজ করবে ও ন্যায়ের পথে চলবে| বলিদানের চেয়ে প্রভু সেগুলিকেই বেশী ভালো ভাবে গ্রহণ করেন| 4 অহঙ্কার হল একটি পাপপূর্ণ জিনিস| এতে মানুষের অসততা বোঝায়| 5 বুদ্ধিপূর্ণ পরিকল্পনা লাভের দিকে নিয়ে য়েতে পারে| কিন্তু তুমি যদি সতর্ক না হও এবং কাজের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করো তাহলে তুমি গরীব হয়ে যাবে| 6 লোক ঠকিয়ে বড়লোক হলে শীঘ্রই তোমার সমস্ত ধনসম্পদ নষ্ট হবে এবং তোমার অসততা তোমার মৃত্যুর কারণ হবে| 7 দুষ্ট লোকরা য়ে কুকর্ম করে তা তাদের ধ্বংস করবে| তারা ঠিক কাজ করতে অস্বীকার করে| 8 দুষ্ট ব্যক্তিরা সব সময় অন্যদের ঠকাতে চেষ্টা করে| কিন্তু ভালো লোকরা সর্বদা সত্ ও ন্যায়সঙ্গত কাজ করে| 9 ঝগড়াটে বউযের সাথে ঘর করার চেয়ে ছাদের ওপর একলা থাকা শ্রেয়| 10 অসত্ ব্যক্তি মন্দ কাজ করতে ইচ্ছা করে এবং তারা কারো প্রতি দযা প্রদর্শন করে না| 11 ঈশ্বরকে নিয়ে যারা মজা করে তারা শাস্তি পাওয়ার যোগ্য এবং বোকারা তার থেকে শিক্ষা পাবে| তারা জ্ঞানী হয়ে উঠবে এবং তারা আরো বেশী জ্ঞান প্রাপ্ত হবে| 12 ঈশ্বর মঙ্গলময| ঈশ্বর জানেন দুর্জনরা কি করে বেড়াচ্ছে| তিনিই তাদের শাস্তি দেবেন| 13 যদি কেউ দরিদ্রকে সাহায্য় করতে অস্বীকার করে তাহলে তার প্রয়োজনের সময়ও কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসবে না| 14 কেউ যদি তোমার ওপর রেগে থাকে তাহলে তাকে গোপন একটা উপহার পাঠাও| গোপনে দেওয়া উপহার প্রকট ক্রোধকে প্রশমিত করে| 15 ন্যায়-বিচার সজ্জন ব্যক্তিদের সুখী করে তোলে| কিন্তু দুর্জন ব্যক্তিদের ভীত করে| 16 জ্ঞানের পথ কেউ ত্যাগ করলে বুঝতে হবে সে ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে| 17 যদি কোন ব্যক্তি সুখ সম্পত্তি ভালোবাসে, সে দরিদ্রে পরিণত হবে| একজন ব্যক্তি যদি শুধুমাত্র দ্রাক্ষারস পান করতে এবং খুব মশলাদার রান্না খেতে চায় তাহলে সে কোনদিনই ধনী হতে পারবে না| 18 ভালো লোকদের প্রতি দুষ্ট লোকরা য়ে সব খারাপ কাজগুলি করে তার জন্য তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে| সত্ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অসত্ ব্যক্তিরা যা সব করে তার জন্য দুষ্ট লোকদের দাম দিতেই হবে| 19 রাগচটা ও বিবাদী স্ত্রীর সঙ্গে ঘর করার চেয়ে মরুভূমিতে বাস করা ভাল| 20 একজন জ্ঞানী ব্যক্তি ভবিষ্যতে তার কাজে লাগবে এমন জিনিসপত্র সঞ্চয় করে রাখে| কিন্তু একজন নির্বোধ যা কিছু অর্জন করে তার সবটাই তাড়াতাড়ি খরচ করে ফেলে| 21 য়ে ব্যক্তি সর্বদা দযা ও ভালবাসা প্রদর্শন করে সে সুস্থ জীবন লাভ করে| সে অর্থ ও সম্মান পায়| 22 এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি যা চায় তাই করতে পারে| এমন কি, সে শক্তিশালী লোকদের দ্বারা প্রতিরক্ষা করা শহরকেও আক্রমণ করতে পারে| বাঁচবার জন্য য়ে প্রাচীরের ওপর তাদের আস্থা ছিল, সেই প্রাচীরও সে ধ্বংস করতে পারে| 23 সে কি বলছে এই বিষয়ে যদি কোন ব্যক্তি সতর্ক থাকে তাহলে সে সংকট থেকে দূরে থাকতে পারবে| 24 এক জন অহঙ্কারী মানুষ নিজেকে অন্যদের থেকে শ্রেষ্ঠ মনে করে| সে তার কাজের ধারা দিয়েই দেখিয়ে দেয় সে কতখানি দুষ্ট| 25 এক জন অলস ব্যক্তির অতিরিক্ত দাবী তার ধ্বংসের কারণ হয়| তার যা করা দরকার তা করতে অস্বীকার করায অলস ব্যক্তি নিজেকে ধ্বংস করে| কিন্তু এক জন ভালো লোক অনেক কিছু দিয়ে দেয় কারণ তার প্রচুর আছে| 26 27 দুর্জনরা প্রভুকে কিছু উত্সর্গ করলে প্রভু খুশী হন না| বিশেষ করে তারা যখন তাদের উত্সর্গের পরিবর্তে তাঁর কাছ থেকে কিছু পেতে চেষ্টা করে তখন| 28 মিথ্যেবাদীর বিনাশ হবে| যারা মিথ্যেবাদীদের কথা শুনে চলবে তাদেরও বিনাশ হবে| 29 এক জন সজ্জন ব্যক্তি জানে য়ে সে সঠিক| কিন্তু একজন দুষ্ট লোককে ভান করতে হয়| 30 কোন ব্যক্তিই একটি পরিকল্পনাকে সফল করতে য়থেষ্ট জ্ঞানী নয় যদি ঈশ্বর তার বিরুদ্ধে থাকেন| 31 মানুষ যতই যুদ্ধ জয়ের প্রস্তুতি নিক প্রভু না চাইলে কিছুতেই তারা যুদ্ধে জয়লাভ করতে পারবে না|
1 ধনী হওয়ার চেয়ে সম্মানিত হওয়া শ্রেয়| সোনা ও রূপোর চেয়ে সুনাম অর্জন করা বেশী গুরুত্বপূর্ণ| 2 গরীব এবং ধনীর মধ্যে কোন বিভেদ নেই| সবাই সমান, প্রভুই তাদের তৈরী করেছেন| 3 জ্ঞানী ব্যক্তিরা আগে থেকে সংকটের আভাষ পায় এবং সে পথ থেকে দূরে থাকে| কিন্তু মূর্খরা সমস্যার অভ্য়ন্তরে প্রবেশ করে দুর্ভোগ পোহায| 4 বিনযী হও এবং প্রভুকে সম্মান জানাও| তাহলেই তুমি ধন-সম্পদ, সম্মান এবং জীবন লাভ করবে| 5 দুর্জনরা সমস্যার ফাঁদে আটকে পড়ে| কিন্তু য়ে ব্যক্তি তার আত্মাকে যত্ন করে সে সমস্যা থেকে দূরে থাকে| 6 শৈশব কাল থেকে একটি শিশুকে ঠিক পথে বাঁচতে শেখাও| শিশুটি তার বৃদ্ধ বয়স পর্য়ন্ত ঠিক পথে বাঁচা অব্যাহত রাখবে| 7 দরিদ্ররা চির কালই ধনীদের দাসত্ব করে| এক জন ব্যক্তি য়ে ধার করে, সে যার কাছ থেকে ধার করে তার কাছে ক্রীতদাস হয়ে যায়| 8 য়ে সমস্যার বীজ বোনে সে সমস্যারই ফসল তোলে| এবং পরিশেষে অন্যদের সমস্যায় ফেলার জন্য তার নিজেরই বিনাশ হয়| 9 য়ে মুক্তহস্তে দান করে তার কপালে আশীর্বাদ জোটে| সে আশীর্বাদ-ধন্য হবে কারণ সে তার নিজের খাবার গরীবদের সঙ্গে ভাগ করে খেয়েছিল| 10 যারা অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের তাড়িয়ে দাও, সংঘাত আপনিই দূর হবে| তখন ন্যায় ও অপমানজনক আচরণ বিশ্রাম পাবে| 11 যদি তুমি একটি খাঁটি হৃদয় ভালবাস, যদি তোমার বাণী হয় মার্জিত, তাহলে রাজাও তোমার বন্ধু হবে| 12 যারা প্রভুকে জানে তাদের প্রভু রক্ষা করেন| শ্রদ্ধাশূন্য অবিশ্বাসী লোকদের কথা প্রভু বিনাশ করেন. 13 অলস ব্যক্তি বলে, “এখন আমি কাজে য়েতে পারব না| বাইরে একটি সিংহ রযেছে| বাইরে গেলেই সে আমাকে মেরে ফেলবে|” 14 ব্যভিচারের পাপ হল একটি ফাঁদের মতো| সেই ফাঁদে য়ে পা দেয় তার ওপর প্রভু ভয়ঙ্কর ক্রুদ্ধ হন| 15 শিশুরা মূর্খামি করে| কিন্তু তুমি যদি তাদের শাস্তি দাও তাহলে ওরা আর ঐ কাজ করবে না| 16 এই দুটো জিনিস তোমাকে দরিদ্রে পরিণত করবে নিজে ধনী হতে গিয়ে দরিদ্রকে আঘাত করা এবং ধনীকে উপহার দেওয়া| 17 আমি যা বলছি তা মন দিয়ে শোন| জ্ঞানী ব্যক্তিরা যা বলে গিয়েছেন আমি তা তোমাকে শিখিয়ে দেব| এই শিক্ষামালাগুলি থেকে শিক্ষা নাও| 18 এগুলি যদি মনে রাখতে পারো তাহলে তোমার মঙ্গল হবে| তুমি যদি এগুলি বলতে পারো তাহলে এটা তোমাকে সাহায্য করবে| 19 আমি তোমাকে এখন এগুলি শেখাব| আমি চাই তুমি প্রভুর প্রতি বিশ্বাস রাখো| 20 আমি তোমার জন্য 30টি নীতিকথা লিখেছি| এগুলি হল উপদেশ ও নানাবিধ জ্ঞানের কথা| 21 এগুলি তোমাকে সত্য এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখাবে| তাহলে তোমাকে যারা পাঠিয়েছিল তাদের কাছে তুমি সঠিক উত্তর দিতে পারবে| 22 দরিদ্রের কাছ থেকে জিনিস চুরি করা সহজ| কিন্তু তা করো না এবং আদালতে দীনহীনের কাছ থেকে কোন সুবিধা উপভোগ করো না| 23 প্রভু গরীবদের পক্ষে রযেছেন| প্রভু তাদের সমর্থন করেন| সুতরাং কেউ গরীবদের কিছু নিলে প্রভু তা আবার ছিনিয়ে নেন| 24 রগচটা লোকের সাথে বন্ধুত্ব কোরো না| য়ে লোক খুব তাড়াতাড়ি রেগে যায় তার খুব কাছে য়েও না| 25 যদি তুমি তা কর তাহলে তুমি হয়ত তার মত আচরণ করতে শিখবে এবং সংকটে পড়বে| 26 অন্যের ঋণ শোধের অঙ্গীকার করো না| 27 যদি তুমি জামিনদার হিসেবে সেই ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে না পারো তাহলে তুমি সব হারাবে| কেন শুধু শুধু নিজের শয়্য়াটুকু খোযাতে যাবে? 28 সম্পত্তি সীমার পুরাতন চিহ্ন, যা তোমার পিতৃপুরুষগণ স্থাপন করে গিয়েছিলেন তা বদলে দিও না| 29 যদি কেউ নিজের কাজে অত্যন্ত দক্ষ হয় তাহলে সে রাজাকে সেবা করার যোগ্য| তাকে আর সাধারণ লোকের জন্য কাজ করতে হবে না|
1 যখন তুমি কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বসে খাওয়া-দাওযা করছো তখন মনে রেখো তুমি কার সঙ্গে বসে আছো| 2 কখনও বেশী খেও না এমনকি ক্ষুধার্ত থাকলেও নয়| 3 সে যদি সুখাদ্যের আয়োজন করে তাহলেও বেশী খেও না কারণ এটা একটা চালাকিও হতে পারে| 4 ধনী হতে গিয়ে স্বাস্থ্য ক্ষয় কোরো না| যদি তুমি জ্ঞানী হও তাহলে তুমি খুব ধৈর্য়্য়শীল হবে| 5 ডানা মেলে পাখীর উড়ে যাওয়ার মতো টাকাকড়িও দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়| 6 স্বার্থপর লোকের সঙ্গে ভোজনে বোসো না| তার পছন্দের খাবার থেকে দূরে থেকো| 7 কারণ য়ে খাদ্যটি সে কিনেছে সে শুধু সেটার দামের কথাই ভাবে| সে তোমাকে বলতে পারে, “খাও এবং পান কর|” কিন্তু এটা তার হৃদয়ের অভ্য়ন্তরের কথা নয়| 8 তুমি যদি তার খাবার খাও তাহলে তুমি অসুস্থ হয়ে পড়বে এবং তোমার প্রশংসাবাক্য হবে একটি বাজে খরচ| 9 মূর্খকে শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা কোরো না| সে তোমার জ্ঞানের কথা নিয়ে উপহাস করবে| 10 পুরানো সম্পত্তির সীমার স্থানান্তর কোরো না| অনাথদের জমিজমা গ্রাস করার চেষ্টা কোরো না| 11 প্রভু অনাথদের একজন শক্তিশালী প্রতিরক্ষক সুতরাং তিনি তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন| 12 শিক্ষকের কথা শোন এবং যতটা পার তাঁর কাছ থেকে শিখে নাও| 13 প্রয়োজন হলে তোমার শিশুকে শাস্তি দাও| তাকে মারধোর করলেও তার ক্ষতি হবে না| 14 যদি তাকে চড় চাপড় মারো তাহলে তুমি তার জীবন রক্ষা করতে পারবে| 15 পুত্র আমার, যদি তুমি জ্ঞানী হয়ে ওঠো তাহলে আমি খুশী হব| 16 আমার হৃদয় খুশী হবে যদি তুমি সঠিক কথাগুলো বলতে পারো| 17 দুর্জনের প্রতি ঈর্ষা কোরো না| কিন্তু সর্বদা চেষ্টা করো যাতে প্রভুকে সম্মান জানানো যায়| 18 সর্বদা আশার আলো আছে এবং তোমার আশা কখনও হারিয়ে যাবে না| 19 সুতরাং, পুত্র আমার, শোন, জ্ঞানী হও| সঠিক জীবনযাপনে সর্বদা সতর্ক থেকো| 20 পেটুক এবং মদ্যপ ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব কোরো না| 21 য়ে অতিরিক্ত খাবার খায় এবং দ্রাক্ষারস পান করে সে দরিদ্রে পরিণত হবে| তারা খায়-দায় আর ঘুমোয় এবং শীঘ্রই তাদের যাবতীয় সব কিছু খোযা যায়| 22 পিতা যা বলে তা শুনে চলো| পিতা ছাড়া তোমার জন্ম হতো না| এবং মাকে সম্মান জানাও| এমনকি সে বৃদ্ধা হলেও তাকে সম্মান জানাবে| 23 সত্য, জ্ঞান, শিক্ষা এবং বোধ খুব মূল্যবান| এগুলিকে তোমার কেনা উচিত্, বিক্রি করা নয়| 24 সজ্জন ব্যক্তির পিতা অত্যন্ত সুখী হয়| যদি কারো শিশুপুত্র জ্ঞানী হয় তাহলে সেই শিশু আনন্দ বয়ে আনে| 25 সুতরাং তোমার পিতামাতাকে সুখী হতে দাও| তোমার মা, যিনি তোমাকে জন্ম দিয়েছেন তাঁকে আনন্দ করতে দাও| 26 পুত্র আমার কাছে এসো এবং আমি যা বলছি তা শোন| আমার জীবনকে তোমার জন্য উদাহরণস্বরূপ বিবেচনা কর| 27 বেশ্যা এবং দুশ্চরিত্রা মহিলা হল ফাঁদ| তারা হল গভীর কুয়ো যার ভেতর থেকে তুমি আর কোনদিন বেরিয়ে আসতে পারবে না| 28 এক জন খারাপ মেয়ে তোমার জন্য চোরের মতো অপেক্ষা করবে| এবং সে অনেক পুরুষকে পাপের পথে টেনে নামায| 29 যারা অতিরিক্ত দ্রাক্ষারস পান করে এবং জোরালো পানীয় গ্রহণ করে তাদের পক্ষে খুব খারাপ হবে| তারা যখন তখন মারদাঙ্গা এবং বিবাদে জড়িয়ে পড়ে; তাদের চোখ লাল হয়ে ওঠে, যেখানে সেখানে হোঁচট খায় এবং নিজেদের আঘাত করে| তারা এই সমস্যাগুলোকে এড়াতে পারে না! 30 31 সুতরাং দ্রাক্ষারসের ব্যাপারে সতর্ক থেকো| লাল দ্রাক্ষারস হয়ত দেখতে প্রলুদ্ধকর; সেটা পেয়ালার মধ্যে ঝকমক করে| তুমি যখন সেটা পান কর তখন তা সুন্দর ভাবে গলা দিয়ে নীচে নামে| 32 কিন্তু শেষে তা সাপের মতো ছোবল মারে| 33 দ্রাক্ষারস পান করলে তুমি চোখে অদ্ভুত সব জিনিস দেখবে| তোমার মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত হয়ে পড়বে| 34 যখন তুমি শুয়ে পড়বে তখন তোমার মনে হবে য়েন তুমি উত্তাল সমুদ্রের ওপর শুয়ে আছো| মনে হবে জাহাজের ওপর শুয়ে রযেছো| 35 তুমি বলবে, “তারা আমাকে আঘাত করেছে কিন্তু আমি অনুভব করি নি| তারা আমাকে মেরেছে কিন্তু আমি তা মনে রাখি নি| এখন আর আমি জেগে উঠতে পারব না| আমি আরো একটি পানীয় চাই|”
1 দুর্জন ব্যক্তিদের হিংসা কোরো না| তাদের কাছাকাছি থাকবার ইচ্ছেও করো না| 2 তারা সব সময় অন্যের ক্ষতির পরিকল্পনা করে| তারা প্রত্যেকে সমস্যা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করে বেড়ায়| 3 প্রজ্ঞা এবং বোধ দিয়ে গড়া একটি বাড়ী দৃঢ় হয়| 4 জ্ঞান দুর্লভ এবং সুন্দর সম্পদ দিয়ে ঘরগুলিকে ভরে দেয়| 5 প্রজ্ঞা মানুষকে বলবান করে তোলে| জ্ঞান মানুষকে আরো শক্তি দেয়| 6 যুদ্ধের আগে তোমাকে খুব সতর্কভাবে পরিকল্পনা করতে হবে| যদি তুমি যুদ্ধ জিততে চাও তাহলে তোমার অনেক উপদেষ্টার প্রয়োজন| 7 মূর্খরা কোনদিন জ্ঞানের মর্ম বুঝবে না| যখন মানুষ কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তখন মূর্খরা কিছুই বলতে পারে না| 8 যদি তুমি সব সময় সমস্যা সৃষ্টির পরিকল্পনা কর তাহলে অন্যরা তোমাকে জানবে এক জন সমস্যা সৃষ্টির নাযক হিসেবে এবং তারা আর তোমার কথা শুনবে না| 9 মূর্খ ব্যক্তি শুধু পাপের পরিকল্পনা করে| লোকরা ঘৃণাপূর্ণ লোকদের ঘৃণাই করে| 10 সঙ্কটের সময় তুমি যদি দুর্বল হয়ে পড়ো তাহলে তুমি সত্যি সত্যিই এক জন দুর্বল লোক| 11 যদি লোকরা এক জন ব্যক্তিকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে তাহলে তুমি সেই ব্যক্তিকে রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে| 12 তুমি বলতে পারো না, “এটা আমার কাজ নয়|” প্রভু সব জানেন| তিনি এও জানেন তুমি কি কর এবং কেন কর| প্রভু তোমাকে লক্ষ্য করছেন| তোমার কাজ অনুযায়ীপুরস্কার দেবেন| 13 হে পুত্র আমার মধু খাও| মধু বড় উত্তম বস্তু| চাক ভাঙ্গা মধু ভীষণ মিষ্টি| 14 একই রকম ভাবে, প্রজ্ঞা তোমার আত্মার জন্য ভাল| যদি তোমার জ্ঞান থাকে, তাহলে তোমার আশা থাকবে| সেই আশার কোন শেষ নেই| 15 এক জন ভালো লোকের বাড়ীতে চোরের মত লুকিয়ে থেকে অপেক্ষা করো না| তার বাড়ী থেকে চুরি করো না| 16 যদি এক জন সজ্জন ব্যক্তি সাত বারও পড়ে যায় তাহলেও সে আবার উঠে দাঁড়াতে সক্ষম হয়| কিন্তু দুষ্ট ব্যক্তিরা সব সময় সংকটের দ্বারা পরাজিত হবে| 17 শত্রুর বিপদে আনন্দিত হয়ো না| তোমার শত্রু পড়ে গেলে উল্লাস দেখিও না| 18 যদি তুমি তা করো তাহলে প্রভু তা দেখতে পাবেন এবং প্রভু তোমার প্রতি তুষ্ট হবেন না| তখন হয়তো প্রভু তোমার শত্রুকেই সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন| 19 দুর্জন ব্যক্তিদের তোমার চিন্তার কারণ হতে দিও না এবং দুর্জনদের প্রতি ঈর্ষা করো না| 20 ঐ দুর্জনদের কোন আশার প্রদীপ নেই| তাদের আলো অন্ধকারে পরিণত হবে| 21 পুত্র, রাজা এবং প্রভুকে সম্মান কোরো| যারা রাজা ও প্রভুর বিরুদ্ধে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ো না| 22 কেন? কারণ ঐ লোকগুলো শীঘ্রই ধ্বংস হয়ে যাবে| তুমি তো জানো না, যারা তাদের বিরুদ্ধে ঈশ্বর এবং রাজা তাদের জন্য কতখানি সমস্যা নিয়ে আসতে পারেন| তাদের ওপর হঠাত্ বিপর্য়য নেমে আসবে| 23 এগুলি হল জ্ঞানবানদের উক্তি:এক জন বিচারক নিরপেক্ষ হতেই হবে| চেনা লোক বলে তাকে সমর্থন করা বিচারকের উচিত্ নয়| 24 এক জন দুষ্ট ব্যক্তিকে যদি বিচারক নির্দোষ বলে সাব্যস্ত করেন তাহলে লোকরা সেই বিচারককে অভিশাপ দেবে| এমনকি অন্য দেশের লোকরাও ঐ বিচারকের বিরুদ্ধে কথা বলবে| 25 কিন্তু কোন বিচারক যদি দোষী ব্যক্তিকে যোগ্য শাস্তি দান করেন তাহলে সবাই তার প্রশংসা করবে| 26 যথার্থ সত্ উত্তর মানুষকে খুশী করে| ঠিক য়েন ওষ্ঠাধর চুম্বনের মতো| 27 তোমার জমিতে চারা রোপন করবার আগে ঘরবাড়ি তৈরী কোরো না| বসতি স্থাপন করবার আগে তোমার চাষবাসের সমস্ত ব্যবস্থা করে নেবে| 28 প্রকৃত কারণ না থাকলে কোন লোকের বিরুদ্ধে কথা বলো না| আর কখনও মিথ্যা কথা বোলো না| 29 বোলো না, “ও আমাকে আঘাত করেছে বলে আমিও ওকে আঘাত করব| আমার ক্ষতি করেছে বলে আমিও ওকে শাস্তি দেব|” 30 আমি এক জন অলস লোকের জমির পাশ দিয়ে গেলাম| আমি এক জন মূর্খের দ্রাক্ষা ক্ষেতের পাশ দিয়ে গেলাম| 31 সেই সব জমিগুলোতে কাঁটাঝোপ গজিযে উঠছিল| ঐ জমিগুলো আগাছা এবং কাঁটায ভরে গিয়েছিল| এবং ভগ্ন স্তূপের মতো জমির চারপাশের প্রাচীর ভেঙ্গে পড়েছিল| 32 আমি এইগুলির দিকে তাকালাম এবং তাদের সম্বন্ধে ভাবলাম| আমি এগুলি থেকে একটি শিক্ষা পেলাম| 33 আর একটু ঘুম, সামান্য বিশ্রাম, হাত জড়সড় করে তন্দ্রচ্ছন্ন অবস্থায় কাটানো| 34 এগুলি তোমাকে দ্রুত দরিদ্রে পরিণত করবে| তোমার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না, য়েন চোর এসে তোমার সব কিছু চুরি করে নিয়ে গিয়েছে| এই ভাবে কানাকড়িহীন অবস্থায় তোমায় জীবন কাটাতে হবে|
1 এইগুলি শলোমনের আরো কয়েকটি উক্তি| যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের ভৃত্যরা এই কথাগুলি লিখে নেয়| 2 ঈশ্বরের মাহাত্ব্যের জন্য তিনি আমাদের যা জানাতে চান না তা লুকিয়ে রাখেন| এক জন রাজা যা কিছু প্রকাশ করেন তার জন্য তাঁকে সম্মান দেওয়া হয়ে থাকে| 3 আমাদের মাথার অনেক ওপরে রযেছে আকাশ এবং আমাদের পায়ের তলায় আছে গভীর মাটি| রাজাদের মনও সে রকমই| আমরা তাঁদের বুঝতে পারি না| 4 যদি রূপার থেকে খাত বের করে ফেলে তাকে শুদ্ধ করা যায়, তাহলে স্বর্ণকার তা থেকে সুন্দর কিছু বানাতে পারে| 5 ঠিক সেভাবেই যদি রাজার কাছ থেকে কুপরামর্শদাতাদের সরিয়ে ফেলা যায় তাহলে ন্যায় তার রাজ্যের ভিত্তি আরো মজবুত করবে| 6 রাজার সামনে কখনও নিজের সম্বন্ধে হামবড়াই করো না| এক জন বিখ্যাত ব্যক্তি হবার ভান করো না| 7 নিজে থেকে রাজার কাছে গিয়ে অন্য লোকের সামনে অপমানিত হওয়ার থেকে রাজার আমন্ত্রণ পেয়ে তার কাছে যাওয়া অনেক ভাল| 8 তুমি যা কিছু দেখেছ সে সম্বন্ধে বিচারকের কাছে বলবারর জন্য তাড়াহুড়ো করো না| যদি কেউ প্রমাণ করে য়ে তুমি যা দেখেছ তা ভুল, তাহলে তুমি অপ্রস্তুতে পড়বে| 9 যদি কারো সঙ্গে তোমার কোন বিষয় দ্বিমত হয় তবে সে বিবাদ নিজেরাই মিটিয়ে ফেল| পরের কোন গোপন কথা কখনও প্রকাশ করে দিও না| 10 তুমি যদি তা কর তুমি লজ্জায় পড়ে যাবে এবং বদনাম তোমাকে কখনও ছেড়ে যাবে না| 11 ঠিক সময় ঠিক কথাটি বলা হল একটি রূপোর ফ্রেমে সোনার আপেলের মতো| 12 জ্ঞানী লোকের সতর্কবাণী হল সব থেকে ভালো সোনার তৈরী আংটি বা গহনার থেকেও দামী| 13 গরমের দিনে শস্য কাটার সময় শীতল জলের মতোই একজন বিশ্বস্ত দূত তার প্রেরকের কাছে মূল্যবান| 14 য়ে সব লোকরা উপহার দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু তা পালন করে না তারা হল সেই সব মেঘ বা হাওয়ার মতো যা বৃষ্টি আনে না| 15 তুমি যদি কাউকে ধৈর্য়্য় সহকারে কোন ব্যাপারে বোঝাতে পারো তাহলে রাজারও মত পরিবর্তন করানো যায়| শান্তভাবে কথা বলার ক্ষমতা খুব শক্তিশালী| 16 মধু সুমিষ্ট কিন্তু তা বেশী মাত্রায় খেলে অসুখ হয়| 17 ঠিক তেমনই, যদি তুমি প্রায়ই তোমার প্রতিবেশীর বাড়ি যাও, সে তোমাকে ঘৃণা করতে শুরু করবে| 18 য়ে ব্যক্তি আদালতে মিথ্যে কথা বলে সে খুব বিপজ্জনক| সে হল একটি তরোয়াল, একটি মুগুর বা একটি তীক্ষ্ণ বাণের মতো| 19 বিপদের সময় কখনও মিথ্যাবাদীর ওপর নির্ভর কোরো না| সে হল একটা নড়বড়ে দাঁত বা একটি টলমলে পায়ের মতো| 20 এক জন শোকার্ত মানুষকে আনন্দের গান শোনানো হল একটি শীতের দিনে লোকদের গা থেকে বস্ত্র কেড়ে নেওয়ার মতো, যারা শীতে জমে যাচ্ছে| এ হলো য়েন সোডার সাথে অম্ল রস মেশানো| 21 যদি তোমার শত্রু ক্ষুধার্ত হয় তাকে খাবার দাও, যদি সে তৃষ্ণার্ত হয় তবে তাকে জল দাও| 22 তুমি এরকম করলে সে লজ্জা পাবে| সেটা হবে য়েন তার মাথায় জ্বলন্ত কযলা রাখার মত এবং প্রভু তোমাকে শত্রুর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করার জন্য পুরস্কৃত করবেন| 23 উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হাওয়ায় বৃষ্টি হয়| ঠিক এমন করেই গুজব থেকে ক্রোধ জন্ম নেয়| 24 এক জন মুখখরা স্ত্রীর সঙ্গে এক বাড়িতে থাকার চেয়ে ছাদে থাকা ভাল| 25 দূরের কোন স্থান থেকে আসা সুসংবাদ হল উত্তপ্ত ও তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পাওয়া শীতল জলের মতো| 26 যদি কোন ভালো মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে কোন মন্দ লোককে অনুসরণ করে তা হবে পরিষ্কার জল দূষিত হয়ে যাওয়ার মতো ব্যাপার| 27 খুব বেশী মধু খাওয়া ভালো নয়, ঠিক তেমনই নিজের জন্য সম্মান আদায়ের চেষ্টাও সম্মানের নয়| 28 য়ে মানুষ নিজেকে সামলাতে পারে না সে হল সেই শহরের মতো যার প্রাচীর ভেঙে গেছে|
1 গরমের দিনে য়েমন তুষারপাত হওয়া উচিত্ নয়, শস্য কাটার সময় য়েমন বৃষ্টি হওয়া উচিত্ নয় ঠিক তেমনি মূর্খদের সম্মান করা মানুষের উচিত্ নয়| 2 কেউ যদি তোমার মন্দ কামনা করে তা নিয়ে চিন্তা করো না| তুমি যদি খারাপ কিছু না করো তোমার কোন ক্ষতি হবে না| সেই ব্যক্তির কথাগুলি হবে উড়ে চলে যাওয়া পাখির মতো যারা তোমার পাশে থামবে না| 3 ঘোড়াকে চাবুক মারতে হবে, গাধার পিঠে বলগা বাঁধতে হবে আর মূর্খদের মারতে হবে| 4 এ হল এক কঠিন পরিস্থিতি| যদি কোন মূর্খ তোমাকে বোকার মত কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে তাহলে তুমি বোকার মতো উত্তর দিও না কারণ, তাহলে তোমাকে মূর্খ বলে মনে হবে| যদি তুমি তাদের উত্তর না দাও তাহলে তারা নিজেদের খুব বুদ্ধিমান ভাববে| 5 6 কখনও কোন মূর্খকে তোমার বার্তা বহন করতে দিও না| যদি তা কর তাহলে তা হবে নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মেরে সমস্যা সৃষ্টি করার মতো ব্যাপার| 7 যখন কোন মূর্খ কোন জ্ঞানী লোকের মত কথা বলতে চেষ্টা করে, তা হয় প্রায় একজন মাতালের তার হাত থেকে কাঁটা তুলে ফেলার প্রচেষ্টার মত| পঙ্গু মানুষের হাঁটার প্রচেষ্টার সামিল| 8 মূর্খকে সম্মান দেখানো হল গুলতিতে পাথর বাঁধার মতোই খারাপ ব্যাপার| 9 এক জন মাতালকে তার হাত থেকে কাঠের চোঁছ বার করবার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা আর একজন মূর্খের মুখ থেকে জ্ঞানগর্ভ উক্তির প্রকাশ সমান হাস্যকর| 10 এক জন মূর্খকে বা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া একজন মাতালকে ভাড়া করা বিপজ্জনক| তুমি জানো না কে আঘাত পেয়ে যাবে| 11 কুকুর খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে বমি করে| তারপর কুকুরটি তার বমি খেয়ে ফেলে| মূর্খও ঠিক তেমনি ভাবে একই ভুল বার বার করে চলে| 12 য়ে ব্যক্তি নিজেকে জ্ঞানী মনে করে সে যদি তা না হয় তাহলে সে মূর্খেরও অধম| 13 য়ে অলস সে বলে, “আমি আমার বাড়ি ছেড়ে বেরোব না| রাস্তায় সিংহ আছে|” 14 এক জন অলস ব্যক্তি হল দরজার মতো| দরজা য়েমন ঠিক কব্জার সাথে ঘুরে যায়, য়ে অলস সেও ঠিক তেমনি ভাবে বিছানায পাশ ফিরে যায়| সে আর অন্য কোথাও যায় না| 15 য়ে অলস তার থালা থেকে মুখে খাবার তুলতেও আলস্য| 16 এক জন অলস লোক নিজেকে সাতজন চতুর লোক যারা তাদের ভাবনার জন্য যুক্তি দেখাতে পারে, তাদের চেয়ে বেশী জ্ঞানী বলে বিবেচনা করে| 17 দুজন মানুষের ঝগড়ার মাঝখানে নাক গলাতে যাওয়া বিপজ্জনক| ওটি পাশ দিয়ে চলে যাওয়া একটি কুকুরের কান ধরে টানার মতো ব্যাপার| 18 কেউ যদি একটি লোককে ঠকানোর পর বলে য়ে সে মজা করছিল তা হবে একজন পাগলের উদ্দেশ্যহীনভাবে জ্বলন্ত তীর ছুঁড়ে দুর্ঘটনাবশতঃ কাউকে মেরে ফেলার মতো ব্যাপার| 19 20 জ্বালানি কাঠের অভাবে আগুন নিভে যায়| একই রকম ভাবে, অপবাদ শূন্য তর্কও থেমে যাবে| 21 কাঠকযলা য়েমন কয়লাকে জ্বলতে সাহায্য করে, কাঠ য়েমন আগুনকে জিইয়ে রাখে ঠিক তেমনই যারা সমস্যা সৃষ্টি করে তারা তর্ককে বাঁচিয়ে রাখে| 22 ভালো খাবার খেতে য়েমন মানুষ ভালোবাসে, ঠিক তেমনই তারা গুজবও ভালবাসে| 23 য়ে সব বন্ধুত্বপূর্ণ কথাবার্তা একটি দুরভিসন্ধি ঢেকে দেয় তা হল মাটির পাত্রের ওপর রূপালি রঙের মতো| 24 য়ে মন্দ সে ভাল কথা দিয়ে তার কুপরিকল্পনা ঢেকে রাখে| কিন্তু তার দুরভিসন্ধি থাকে তার হৃদয়ে| 25 সে হয়তো তোমার সঙ্গে সদয় হয়ে কথা বলবে, কিন্তু তাকে বিশ্বাস কোরো না| তার মন দুর্বুদ্ধিতে ভরা| 26 সে তার মধুর কথা দিয়ে কুপরিকল্পনাগুলি ঢেকে রাখে| কিন্তু সে নীচ| কিন্তু শেষ পর্য়ন্ত লোকরা তার কু-কর্মের কথা ঠিকই জানতে পারবে| 27 য়ে মানুষ অন্য মানুষকে ফাঁদে ফেলতে চায় সে নিজেই নিজের ফাঁদে পড়ে| য়ে ব্যক্তি অন্য লোকের ওপর পাথর গড়িযে ফেলতে চায় সে নিজেই সেই পাথরের তলায় পিষে যায়| 28 মিথ্যাবাদীরা তাদের দ্বারা নিপীড়িত লোকদের ঘৃণা করে| যারা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে তারা ধ্বংস আনে|
1 তোমার ভবিষ্যত্ সম্পর্কে মিথ্যে অহঙ্কার করো না| কারণ কাল কি হবে তা তোমার অজানা| 2 কখনও নিজের প্রশংসা নিজে করো না, অন্যকে তা করতে দাও| 3 একখণ্ড ভারী পাথর বা বালি বয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন| কিন্তু একজন মূর্খের ক্রোধের ফলস্বরূপ য়ে সংকটগুলি সৃষ্টি হয় তা সহ্য করা আরো কঠিন| 4 ক্রোধ নিষ্ঠুর ও নীচ এবং ধ্বংসের কারণ| কিন্তু ঈর্ষা এর থেকেও খারাপ| 5 গুপ্ত প্রেম অপেক্ষা খোলাখুলি সমালোচনা ভাল| 6 এক জন বন্ধু তোমাকে তিরস্কার করে হয়তো আঘাত করতে পারে, কিন্তু সেটা তোমার নিজেরই ভালোর জন্য| কিন্তু একজন শত্রু যখন তোমাকে আঘাত করতে চায় তখন সে সদয হয়ে প্রেমসহ ব্যবহার করে| 7 যদি তোমার খিদে না থাকে তবে তুমি মধুও খাবে না| কিন্তু যদি তোমার খিদে পায় তবে তুমি য়ে কোন খাবার, খারাপ খেতে হলেও খাবে| 8 বাড়ী থেকে দূরে থাকা এক জন ব্যক্তি হল নীড় থেকে দূরে থাকা একটি পাখীর মত| 9 একটি সুগন্ধি সৌরভ একজনকে খুশী করতে পারে| কিন্তু এক জন ভালো বন্ধু জীবনত্রাণ কারক উপদেশের চেয়েও মিষ্টি| 10 তোমার নিজের পিতার ও তোমার পিতার বন্ধুদের কথা কখনও ভুলো না| যদি তুমি সমস্যায় পড়ো তাহলে ঘর থেকে অনেক দূরে ভাইযের বাড়িতে সাহায্য চাইতে না গিয়ে তোমার প্রতিবেশীর কাছে সাহায্য চাও| 11 হে পুত্র, তুমি জ্ঞানী হয়ে আমাকে সুখী করো| তাহলেই আমি আমার সমালোচকদের সমালোচনার জবাব দিতে পারব| 12 য়ে জ্ঞানী সে বিপদের সম্ভাবনা দেখলে দূরে সরে যায় কিন্তু মূর্খ যোদ্ধা গিয়ে বিপদে ঝাঁপ দেয় এবং দুর্ভোগ পোহায়| 13 তুমি যদি অপরের ঋণের দায়িত্ব নাও তাহলে তুমি তোমার নিজের বস্ত্র হারাবে| 14 ভোর বেলা চিত্কার করে, “সুপ্রভাত” বলে সম্ভাষণ জানিয়ে তোমার প্রতিবেশীদের জাগিয়ে তুলো না! সে এটাকে আশীর্বাদ না ভেবে অভিশাপ ভাববে| 15 এক জন ঝগড়াটে স্ত্রী হল বর্ষার দিনে অবিরাম ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়ার মতো| 16 ঐ ধরণের স্ত্রীলোককে থামাতে যাওয়া হাওযার গতি রোধ করবার চেষ্টা করবার মতো| এ হল অনেকটা হাত দিয়ে তেল মুঠো করে ধরার চেষ্টা করবার মতো| 17 একটি লোহা আর এক টুকরো লোহার ওপর রেখে ছুরিতে ধার দেওয়া হয়| একই রকম ভাবে, বন্ধুরা পরস্পরকে সংশোধন করতে গিয়ে নিজেদের বিচক্ষণ করে তোলে| 18 য়ে মানুষ ডুমুর গাছের যত্ন নেয় সে তার ফলও ভোগ করে| এই ভাবেই, য়ে ব্যক্তি তার প্রভুর সেবা করে, সে তার জন্য পুরস্কৃত হবে| তার মনিব তার দেখাশোনার ভার নেন| 19 ঠিক য়ে ভাবে জলের দিকে তাকালে এক জন মানুষ নিজের চেহারা দেখতে পায় ঠিক সে ভাবেই একজন মানুষের মনের দিকে তাকালে তার স্বরূপ চেনা যায়| 20 মানুষের বাসনা কখনও পরিতৃপ্ত হয় না, একই রকম ভাবে, মৃত্যু ও ধ্বংসের স্থল তাদের কাছে ইতিমধ্যেই যা আছে তার থেকে সব সময় বেশী চায়| 21 মানুষ য়েমন আগুনের দ্বারা সোনা ও রূপো পরিশুদ্ধ করে ঠিক সে ভাবেই মানুষের প্রশংসার দ্বারা এক জন ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হয়| 22 তুমি এক জন মূর্খকে পিষে গুঁড়ো করে ফেললেও কখনও তার বোকামি ঘোচাতে পারবে না| 23 তোমার মেষ ও ছাগলের পালের ওপর সতর্ক প্রহরার নজর রাখো| তাদের সমস্ত প্রয়োজনের প্রতি যত্ন নিও| 24 শুধু সম্পদই নয়, কোন দেশও চিরস্থায়ী নয়| 25 খড় কেটে ফেল আবার নতুন ঘাস গজাবে| পাহাড়ের গায়ে গজানো ঘাস কেটে ফেল| 26 তোমার মেষদের গা থেকে পশম নিয়ে পোশাক তৈরী করো| তুমি তোমার কিছু ছাগল বিক্রি করে দিয়ে কিছুটা জমি কেনো| 27 তোমার ও তোমার পরিবারের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে ছাগলের দুধ থাকবে| এতে তোমার স্ত্রী, ভৃত্যরা স্বাস্থ্যবতী হবে|
1 মন্দ লোকরা সব কিছুকেই ভয় পায়| কিন্তু ভাল লোকরা হয় সিংহের মত সাহসী| 2 একটি বিদ্রোহী দেশে অনেক অযোগ্য নেতা থাকে যারা খুব অল্পদিনের জন্য শাসন করে| কিন্তু যদি একজন বিচক্ষণ ও জ্ঞানী মানুষ নেতা হয় তাহলে স্থায়ীত্ব বজায় থাকবে| 3 য়ে শাসক দরিদ্র প্রজাদের ওপর অত্যাচার করে সে হল সেই ভারী বৃষ্টির মতো যা শস্য নষ্ট করে| 4 তুমি যদি আইন না মানো তাহলে তুমি মন্দ লোকদের পক্ষ নাও| কিন্তু যদি তুমি আইন মানো তাহলে তুমি মন্দ লোকদের বিপক্ষে যাবে| 5 মন্দ লোক ন্যায় বোঝে না| য়ে সব মানুষ প্রভুকে ভালোবাসে তারাই শুধু এর অর্থ বোঝে| 6 ধনী ও অসত্ হওয়া অপেক্ষা দরিদ্র ও সত্ হওয়া ভাল| 7 য়ে আইন মেনে চলে সে বুদ্ধিমান| কিন্তু য়ে ব্যক্তি অপদার্থ লোকদের বন্ধু হয় সে তার পিতার লজ্জার কারণ হয়| 8 তুমি যদি দরিদ্রদের ঠকিয়ে চড়া হারে তাদের থেকে সুদ নিয়ে ধনী হও তাহলে তোমার ঐশ্বর্য় অন্য আরেক জন এসে অধিকার করে নেবে, য়ে দরিদ্রদের প্রতি দযালু| 9 য়ে ব্যক্তি ঈশ্বরের শিক্ষামালায় কান দেয় না, তার প্রার্থনা ঈশ্বর দ্বারা গ্রাহ্য হবে না| 10 এক জন মন্দ লোক একজন ভাল লোককে সংকটে ফেলবার পরিকল্পনা করতে পারে, কিন্তু সে তার নিজের ফাঁদে নিজেই পড়বে| ভাল লোকের ভালই হবে| 11 ধনী লোকরা সব সময় নিজেদের জ্ঞানী মনে করে| কিন্তু একজন দরিদ্র ব্যক্তি য়ে জ্ঞানী সে ঐ গর্বিত ধনী লোকটির সম্বন্ধে সত্যটি বুঝতে পারে| 12 ভালো লোক নেতা হলে সকলেই সুখী হয় কিন্তু মন্দ লোককে নেতা নির্বাচন করলে সব লোক লুকিয়ে পড়ে| 13 য়ে ব্যক্তি পাপ গোপন করে সে কখনও সফল হয় না| কিন্তু য়ে ব্যক্তি তার অন্যায় স্বীকার করে তা থেকে বিরত হয় সেই ঈশ্বরের করুণা পায়| 14 য়ে ব্যক্তি প্রভুকে শ্রদ্ধা করে সে তার আশীর্বাদ পায়| কিন্তু য়ে ব্যক্তি প্রভুকে ভক্তি করবে না বলে জেদ ধরে থাকে তাকে সমস্যায় পড়তে হয়| 15 যখন এক জন দুষ্ট শাসক অসহায় লোকদের ওপর শাসন করে তখন সে হয়ে ওঠে একটি হিংস্র ভালুক বা একটি সিংহের মত য়ে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত| 16 য়ে শাসক জ্ঞানী নয় তিনি তাঁর অধীনস্থ মানুষদের আঘাত করবেন| কিন্তু য়ে শাসক সত্ এবং ঠকানোকে ঘৃণা করেন তিনি দীর্ঘদিন রাজত্ব করবেন. 17 য়ে ব্যক্তি খুনের দাযে অপরাধী সে কখনও শান্তি পাবে না| তাকে কখনও সমর্থন করো না| 18 যদি এক জন মানুষ সঠিক পথে থাকে তবে সে নিরাপদে থাকবে| কিন্তু য়ে মন্দ হবে সে তার ক্ষমতা হারাবে| 19 য়ে মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে সে প্রচুর খেতে পাবে| কিন্তু য়ে ব্যক্তি সময় নষ্ট করে সে সর্বদা দরিদ্রই থেকে যাবে| 20 য়ে ব্যক্তি ঈশ্বরকে অনুসরণ করে ঈশ্বর তাকে আশীর্বাদ করবেন| কিন্তু য়ে শুধুই ঐশ্বর্য়ের পিছনে ছোটে তাকে শাস্তি পেতে হয়| 21 এক জন বিচারকের ন্যায়পরাযণ হওয়া উচিত্| তাঁর কখনও পক্ষপাতিত্ব দেখানো উচিত্ নয়| কিন্তু কিছু বিচারক অল্প টাকার জন্য তাঁদের বিচার পাল্টে ফেলেন| 22 একজন স্বার্থপর মানুষ শুধুই ধনলাভ করতে চায়| সে বুঝতে পারে না য়ে তার লোভ তাকে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর করে ফেলবে| 23 তুমি যদি কাউকে তার ভুল ধরিয়ে দিয়ে সাহায্য কর তাহলে সে তোমার ওপর খুশী হবে| মিথ্যে স্তোক বাক্য বলার চেয়ে এটা করা বরং শ্রেয়| 24 কিছু মানুষ তাদের পিতামাতার কাছ থেকে চুরি করে| তারা নিজেদের এই বলে প্রতিরক্ষা করে: “এটা অন্যায় নয়|” কিন্তু এরা সবচেয়ে বেশী হিংসাত্মক অপরাধীর মতই খারাপ লোক| 25 একজন স্বার্থপর মানুষ সমস্যার সৃষ্টি করে| কিন্তু য়ে প্রভুর ওপর বিশ্বাস রাখে সে পুরস্কৃত হয়| 26 য়ে মানুষ নিজের ওপর বিশ্বাস রাখে সে মূর্খ| কিন্তু যদি কোন মানুষ জ্ঞানী হয়, তবে সে বিপর্য়য থেকে রক্ষা পেয়ে যাবে| 27 যদি কোন ব্যক্তি দরিদ্রদের দান করে তবে তার যা প্রয়োজন তাই সে পাবে| কিন্তু য়ে দরিদ্রদের সাহায্য করতে অস্বীকার করবে সে নানা সমস্যায় পড়বে| 28 যদি এক জন মন্দ লোককে শাসক হিসেবে নির্বাচন করা হয় তাহলে সবাই লুকিয়ে পড়ে| কিন্তু সেই মন্দ লোক পরাজিত হলে আবার ভাল লোকের কর্ত্তৃত্ব ফিরে আসে|
1 য়ে ব্যক্তি প্রায়ই তিরস্কৃত হয় কিন্তু জেদ ধরে থাকে তাকে হঠাত্ বিপর্য়যের সম্মুখীন হতে হয় এবং সে তার থেকে রক্ষা পাবে না| 2 যখন শাসক ভালো হয় তখন সবাই সুখে থাকে| কিন্তু মন্দ লোক কর্ত্তৃত্ব করলেই সকলে অভিযোগ জানায়| 3 য়ে ব্যক্তি জ্ঞানলাভে আগ্রহী সে তার পিতার সুখের কারণ হয়| কিন্তু য়ে ব্যক্তি বেশ্যালযে গিয়ে অর্থ ব্যয় করে সে অচিরেই তার ঐশ্বর্য় হারাবে| 4 যদি রাজা ন্যায়পরাযণ হন তবে সে দেশ শক্তিশালী হয়ে উঠবে| কিন্তু রাজা যদি জোর করে খুব ভারী কর প্রজার ওপর চাপান, তাহলে সেই দেশ দুর্বল হয়ে পড়বে| 5 য়ে মানুষ অন্য লোকদের তোষামোদ করে নিজের কার্য়্য় সিদ্ধ করতে চায় সে নিজের ফাঁদ নিজেই পাতে| 6 মন্দ লোকরা তাদের নিজেদের কুকর্মের ফাঁদে পড়ে| কিন্তু একজন ভাল মানুষ মনের সুখে গান গাইতে পারে| 7 ভালো লোক দরিদ্র মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে চায়, কিন্তু মন্দ লোক তাদের নিয়ে মাথাই ঘামায় না| 8 উদ্ধত লোকরা একটি শহরে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে, কিন্তু জ্ঞানী লোকরা জ্বলন্ত ক্রোধকে নির্বাপিত করে| 9 যদি এক জন জ্ঞানী একজন মূর্খের সঙ্গে আলোচনা করে কোন সমস্যা মেটাতে চায় তাহলে সেই মূর্খ বোকার মতো তর্ক করতে থাকবে এবং তারা কখনোই এক মত হতে পারবে না| 10 খুনীরা সর্বদাই সত্ লোকদের ঘৃণা করে| মন্দ লোকরা সর্বদা ভাল লোকদের মেরে ফেলতে চেষ্টা করে| 11 এক জন বোকা লোক সহজেই রেগে যায় কিন্তু জ্ঞানী মানুষ ধৈর্য়্য় ধরে নিজেকে সামলে রাখে| 12 এক জন শাসক যদি মিথ্যাকে প্রশ্রয দেয় তবে তার কর্মচারীরা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠবে| 13 একদিক থেকে দেখলে একজন দরিদ্র ব্যক্তি, আর এক জন য়ে দরিদ্রদের কাছ থেকে চুরি করে, তারা একই; তারা দুজনেই প্রভুর দৃষ্টি| 14 য়ে রাজা দরিদ্রদের প্রতি ন্যায়পরাযণ সে দীর্ঘকাল রাজত্ব করবে| 15 শাস্তি ও অনুশাসন দুইই শিশুদের পক্ষে ভাল| যদি কোন শিশুর অভিভাবক তাকে যা খুশী তাই করতে দেয় তবে সে তার মায়ের লজ্জার কারণ হয়| 16 যদি মন্দ লোকরা কর্ত্তৃত্ব করে তাহলে চতুর্দিকে পাপ কাজ হবে| কিন্তু শেষ পর্য়ন্ত ভালো মানুষদের জয় হবেই| 17 তোমার পুত্র অন্যায় করলে তাকে শাস্তি দিও| তাহলে তাকে নিয়ে তুমি গর্ব করতে পারবে এবং সে তোমাকে কখনও লজ্জায় ফেলবে না| 18 য়ে দেশ ঈশ্বর দ্বারা পরিচালিত নয়, সেখানে কখনও শান্তি আসবে না| য়ে দেশ ঈশ্বরের বিধি মেনে চলে সেখানে সুখ বিরাজ করে| 19 তুমি শুধু কথা বলে তোমার ভৃত্যকে কিছু শেখাতে পারবে না| সে তোমাকে বুঝলেও অবজ্ঞা করতে পারে| 20 য়ে ব্যক্তি চিন্তা-ভাবনা না করে কথা বলে তার কোন আশা নেই| ঐ ব্যক্তির চেয়ে বরং এক জন মূর্খের কিছু আশা থাকে| 21 তুমি যদি সব সময় তোমার ভৃত্য যা চায় তাই দিয়ে দাও, সে শেষ পর্য়ন্ত এক জন ভালো ভৃত্য থাকবে না| 22 এক জন রাগী মানুষ সমস্যার সৃষ্টি করে| য়ে খুব সহজেই রেগে যায় সে নানা অপরাধে দাযী হয়| 23 যদি এক জন ব্যক্তি নিজেকে অন্যদের তুলনায় অনেক ভালো মনে করে তাহলে সে নিজের পতনের কারণ হয়| কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি বিনযী হয় তাহলে লোকে তাকে শ্রদ্ধা করে| 24 দুজন চোর এক সঙ্গে কাজ করলেও একে অপরের শত্রু হয়| এক জন চোর আরেক জনকে শাসাবে যাতে যদি সে আদালতের চাপে সত্যি কথা বলতেও চায় তবুও ভয়েই বলতে পারে না| 25 ভয় হল ফাঁদের মতো| কিন্তু যদি তুমি প্রভুর ওপর বিশ্বাস রাখো তাহলে তুমি নিরাপদে থাকবে| 26 অনেক মানুষই রাজার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়| কিন্তু প্রভু সব সময় মানুষকে ন্যায্য বিচার দেন| 27 ভালো মানুষরা অসত্ মানুষকে ঘৃণা করে এবং মন্দ লোকরা সত্ মানুষদের ঘৃণা করে|
1 এগুলি হল ঈথীয়েল ও উকলের প্রতি যাকির পুত্র আগূরের হিতোপদেশ| 2 আমি এক জন বোকা লোক| আমি অন্যদের চেয়েও বেশী বোকা| আমার য়ে ভাবে বোঝা উচিত্ আমি সে ভাবে বুঝতে পারি না| 3 আমি জ্ঞান লাভ করি নি এবং আমি ঈশ্বর বিষয়েও কিছু জানি না| 4 কোন মানুষই কখনও স্বর্গের কাছ থেকে শেখে নি| কোন মানুষই কখনও হাত দিয়ে হাওযা ধরতে পারে নি| কেউই কখনও এক টুকরো কাপড় দিয়ে জল ধরে রাখতে পারে নি| কোন মানুষ পৃথিবীর সীমানা নির্ধারণ করে দেয় নি| যদি কোন ব্যক্তি এসব করে থাকে, তবে তার নাম কি? এবং তার পুত্রের নাম কি? 5 ঈশ্বর যা বলেন তা সত্য বলে প্রমাণিত হয়| যারা ঈশ্বরের কাছে যায় তারা নিরাপদে থাকে| 6 তাই ঈশ্বর যা বলেন তা পাল্টাবার চেষ্টা কোরো না| তুমি যদি তা কর তাহলে ঈশ্বর তোমাকে শাস্তি দেবেন এবং প্রমাণ করে দেবেন য়ে তুমি মিথ্যাবাদী| 7 প্রভু, তোমাকে আমি মৃত্যুর আগে আমার জন্য দুটি কাজ করতে বলব| 8 আমাকে মিথ্যা না বলতে সাহায্য কর| আর আমাকে খুব বেশী ধনী বা দরিদ্র কোরো না| আমাকে শুধু আমার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো দিযো| 9 যদি আমার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস থাকে তাহলে আমি ভাবব য়ে তোমাকে আমার প্রয়োজন নেই| কিন্তু আমি যদি দরিদ্র হই, তাহলে আমি হয়ত চুরি করতে পারি এবং তা ঈশ্বরের নামকে লজ্জিত করবে| 10 কখনও মনিবের কাছে তার ভৃত্যের দুর্নাম কোরো না| যদি তুমি তা কর, তাহলে মনিবটি তোমাকে অবিশ্বাস করবে এবং তোমাকেই দোষী সাব্যস্ত করবে| 11 কিছু মানুষ তাদের পিতার বিরুদ্ধে কথা বলে এবং মাকে সম্মান দেয় না| 12 কিছু মানুষ মনে করে তারা ভাল, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা মন্দ| 13 কিছু মানুষ নিজেদের অপরের তুলনায় অনেক ভাল মনে করে| 14 কিছু মানুষের দাঁত তরবারির মতো এবং তাদের চোযাল ছুরির মতো| এরা দরিদ্রদের থেকে চুরি করবার জন্য তাদের সময়ের সদ্ব্য়বহার করে| 15 কিছু মানুষ আছে যত পায় তত চায়| তারা কেবল, “আমাকে দাও, আমাকে দাও বলে চিত্কার করে| তিনটি জিনিস আছে বা প্রকৃত পক্ষে চারটি বস্তু আছে যাদের কখনও চাহিদা পূরণ হয় না: 16 এরা হল মৃত্যুর স্থান, বন্ধ্যা স্ত্রীলোক, বৃষ্টির অভাবে শুষ্ক জমি এবং উত্তপ্ত আগুন যা থামানো যায় না| 17 য়ে ব্যক্তি তার পিতাকে বিদ্রূপ করে বা তার মাকে মান্য করতে চায় না সে শাস্তি পাবে| তার চোখগুলি য়েগুলি ভর্ত্সনাপূর্ণ দৃষ্টিতে তার অভিভাবকদের দিকে দেখেছে সেগুলো উপড়ে নেওয়া হবে এবং শকুন ও দাঁড় কাকদের খাওয়ানো হবে| 18 তিনটি জিনিস আছে যা আমার পক্ষে বোঝা শক্ত; প্রকৃতপক্ষে চারটি জিনিস আছে যা আমার বোধগম্য হয় না: 19 য়েমন আকাশে বিচরণকারী ঈগলপাখী, পাথরের ওপর সাপের আঁকাবাঁকা গতিবিধি, সমুদ্রে পারাপার করা জাহাজ এবং পুরুষ ও নারীর প্রেম হল সেই চারটি বস্তু| 20 এক জন অবিশ্বাসী স্ত্রী এমন ভাব দেখায় য়েন সে কোন অন্যায় করে না| সে স্নান করে, খায় এবং বলে সে কোন ভুল কাজ করে নি| 21 তিনটি জিনিস আছে যার জন্য পৃথিবীতে সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং প্রকৃতপক্ষে চারটি জিনিস আছে যা পৃথিবী সহ্য করতে পারে না, 22 এরা হল: এক জন ভৃত্যের রাজা হওয়া, এক জন মূর্খের কাছে তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস থাকা, 23 স্ত্রীলোকের মন ঘৃণায পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তার এক জন স্বামী পাওয়া এবং একজন স্ত্রী ভৃত্যর তার মনিব ঠাকবুণের ওপর কর্তৃত্ব পাওয়া| 24 পৃথিবীতে চারটি এমন বস্তু আছে যা ক্ষুদ্র হলেও জ্ঞানী| 25 পিঁপড়েরা ক্ষুদ্র এবং দুর্বল কিন্তু তারা গ্রীষ্মকালে তাদের খাবার সংগ্রহ করে এবং সঞ্চয় করে রাখে| 26 এক জাতীয বেঁজি আছে যারা ক্ষুদ্র হলেও পাথরে ঘর বাঁধে| 27 পঙ্গপালদের কোন রাজাই নেই কিন্তু তবুও তারা একত্রে কাজ করে| 28 টিকটিকি এতই ছোট য়ে হাতের মুঠোয ধরা যায় কিন্তু তাদের রাজপ্রাসাদেও বাস করতে দেখা যায়| 29 হাঁটা অবস্থায় তিনটি জিনিস আকর্ষক| প্রকৃতপক্ষে, চারটি জিনিস| 30 সেগুলি হল: একটি সিংহ (পশুদের রাজ্যের যোদ্ধা, য়ে কোন কিছু থেকে দৌড়ে পালায না|) 31 গর্বিত ভাবে হেঁটে যাওয়া মোরগ; ছাগল এবং প্রজাদের মাঝখানে রাজা| 32 তুমি যদি বোকার মতো গর্বিত হয়ে ওঠো এবং অন্যদের বিরুদ্ধে কু-মতলব আঁটো, তোমাকে থামতে হবে এবং চিন্তা করতে হবে তুমি কি করছ| 33 যদি কোন ব্যক্তি দুধ মন্থন করে সে মাখন পায়| যদি সে অপরের নাকে আঘাত করে তা থেকে রক্তক্ষরণ হয়| ঠিক এভাবেই যদি তুমি একজন রাগী মানুষের সঙ্গে বিরোধ কর তাহলে তা লড়াইতে পরিণত হবে|
1 এগুলি হল লমূযেল রাজার হিতোপদেশ যা তাঁকে তাঁর মা শিখিযেছিলেন| 2 তুমি আমার প্রিয় পুত্র, যার জন্য আমি প্রার্থনা করেছিলাম| 3 স্ত্রীলোকের পিছনে শক্তিক্ষয় কোরো না কারণ তারা অনেক রাজার ধ্বংসের কারণ| 4 লমূয়েল, রাজাদের পক্ষে দ্রাক্ষারস পান করা বিজ্ঞজনোচিত নয়, শাসকের পক্ষে সুরা পান করা বিজ্ঞজনোচিত নয়| 5 তারা দ্রাক্ষারস পান করে সমস্ত আইন ভুলে গিয়ে দরিদ্রদের ওপর অত্যাচার করতে পারে তাদের অধিকার কেড়ে নিতে পারে| 6 যারা দরিদ্র, যারা সমস্যায় জর্জরিত তাদের দ্রাক্ষারস পান করতে দাও যাতে তারা তাদের দুঃখকষ্ট ভুলে য়েতে পারে| 7 8 য়ে ব্যক্তি নিজেকে সাহায্য করতে পারে না তাকে সাহায্য করা উচিত্| য়ে কথা বলতে পারে না এমন কারো হয়ে কথা বলো| দুর্বল লোকদের অধিকার রক্ষা কর| 9 যা তুমি সঠিক বলে মনে কর তার পক্ষ নিয়ে দাঁড়াও| সব মানুষের প্রতি ন্যায় বিচার কর| দরিদ্রদের এবং সাহায্য প্রার্থীদের অধিকার রক্ষা কর| 10 একজন যথার্থ স্ত্রীসত্যিই দুর্লভ| কিন্তু সে অলঙ্কারের চেয়েও মূল্যবান| 11 তার স্বামীর তার ওপর পূর্ণ আস্থা আছে| সে কখনও দরিদ্র হবে না| 12 এই ধরণের স্ত্রী তার স্বামীর কাছে সমস্ত জীবনের একটি পুরস্কার স্বরূপ, বোঝা নয়| 13 সে পশম ও মসীনা সংগ্রহ করে এবং খুশী মনে তার নিজের হাতে বিভিন্ন জিনিস বানায়| 14 দূর দেশ থেকে আসা এক জাহাজের মতো সে বাড়ির জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে| 15 সে প্রত্যেক দিন ভোরবেলা উঠে তার পরিবারের জন্য রান্না করে এবং ভৃত্যদের ভাগ তাদের দিয়ে দেয়| 16 সে একটি জমি পর্য়বেক্ষণ করে এবং তারপর সেটা ক্রয করে| সে তার অর্জিত অর্থ ব্যয় করে এবং দ্রাক্ষাক্ষেত বপন করে| 17 সে হয় কঠোর পরিশ্রমী এবং সমস্ত রকম কাজে সক্ষম| 18 সে যখনই তার নিজের তৈরী জিনিসের ব্যবসা করে তখনই লাভ করে| 19 সে সুতো কাটে এবং নিজের কাপড় বোনে| 20 সে সব সময় দরিদ্র ও সাহায্য প্রার্থীদের দান করে| 21 শীতে যখন বরফ পড়ে তখন সে পরিবারের জন্য দুশ্চিন্তা করে না| সে তাদের সবাইকে ভাল গরম কাপড় দেয়| 22 সে বিছানায় পাতার জন্য চাদর তৈরী করে এবং সে দামী মসলিনের বস্ত্র পরে| 23 তার স্বামী হয় দেশের নেতাদের একজন যাকে সকলেই শ্রদ্ধা করে| 24 তার ব্যবসায়িক দক্ষতা থাকে এবং সে বস্ত্র ও বন্ধনী তৈরী করে ব্যবসায়িকদের কাছে বিক্রি করে| 25 সে প্রশংসিত হয়এবং মানুষ তাকে সম্মান করে| সে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়| 26 সে বিশাল জ্ঞান নিয়ে কথা বলে এবং মানুষকে স্নেহময ও দযালু হতে শেখায়| 27 সে কখনও আলস্য দেখায় না এবং তার গৃহের সমস্ত জিনিসের দেখাশোনা করে| 28 তার সন্তানরা তার প্রশংসা করে, তার স্বামী তাকে নিয়ে গর্ব করে বলে, 29 “আরো অনেক ভালো স্ত্রীলোক আছে, কিন্তু তুমি তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ|” 30 রূপলাবণ্য তোমাকে লোকদের সামনে ঠকাতে পারে| কিন্তু য়ে স্ত্রীলোক প্রভুকে শ্রদ্ধা করে তাকে অবশ্যই প্রশংসা করা উচিত্| 31 তাকে তার যোগ্য পুরস্কার দাও| তার কাজের জন্য সর্বসমক্ষে তার গুণগান কর|
1 এগুলি হল, উপদেশকের কথা যিনি ছিলেন দায়ূদের পুত্র এবং জেরুশালেমের রাজা| 2 সবই এত অর্থহীন! তাই উপদেশকের মতে সবই অসার, সবই সময়ের অপচয! 3 মানুষ সূর্য়ের নীচে য়ে কঠিন পরিশ্রম করে সে কি তার কোন ফল পায়? না! 4 বংশপরম্পরা পর্য়ায়এমে আসে এবং যায়| কিন্তু পৃথিবী চিরন্তণ| 5 সূর্য় ওঠে আবার অস্ত যায়| তারপর দ্রুত ফিরে যায় সেই একই জায়গায় য়েখান থেকে আবার সূর্য় ওঠে| 6 বাতাস দক্ষিণে বয় এবং উত্তরেও বয়| বাতাস চারিদিক ঘুরে ঘুরে আবার তার নিজের জায়গায় ফিরে যায়| 7 সব নদী বার বার একই দিকে বয়ে চলে| সমস্ত নদীই সমুদ্রে গিয়ে মেশে কিন্তু সমুদ্র কখনও পূর্ণ হয় না| 8 সব কথাই ক্লান্তিকর| কিন্তু তবুও লোকে কথা বলে| আমরা সব সময়ই কথা শুনি কিন্তু তাতে আমরা সন্তুষ্ট হই না| আবার সব সময় আমরা য়ে সব জিনিস দেখি তাতেও আমাদের মন ভরে না| 9 সব জিনিসই সৃষ্টির সময় য়েমন ছিল সে রকমই থেকে যায়| যা আগে করা হয়েছে তাই আবার পরেও করা হবে| সূর্য়ের নীচে কোন কিছুই নতুন নয়| 10 এমন কোন কিছু নেই যাকে কোন ব্যক্তি নতুন বলতে পারে! য়ে জিনিসকে মানুষ নতুন বলবে তা আমাদের জন্মের আগে থেকেই বর্তমান| 11 যা অনেক আগে ঘটে গেছে সে ঘটনা লোকে মনে রাখে না| এখন যা ঘটছে ভবিষ্যতে তা লোকে ভুলে যাবে| পরবর্তী প্রজন্ম মনেও রাখবে না আগেকার লোক তাদের জন্য কি করে গেছে| 12 আমি উপদেশক, আমি ছিলাম জেরুশালেমের অন্তর্গত ইস্রায়েলের রাজা| 13 সূর্য়ের নীচে যা কিছু ঘটে তাকে আমি প্রজ্ঞা দ্বারা জানতে চেয়েছিলাম| আমি জানতে পেরেছিলাম য়ে ঈশ্বর লোকদের যা করতে দেন তা খুবই কঠিন ও কষ্টকর| 14 আমি দেখেছিলাম সূর্য়ের নীচে যা কিছু করা হয় তা সবই অসার, সময়ের অপচয় মাত্র| এ য়েন অনেকটা হাওয়ার পেছনে ছোটা| 15 যা কিছু বাঁকা তাকে পালেট সোজা করা সম্ভব নয়| যা নেই তাকে সরবরাহ করা যায় না| 16 আমি নিজেকে বলেছিলাম, “জেরুশালেমে আমার পূর্বে য়েসব ব্যক্তি ছিলেন, তাঁদের সকলের চেয়েও আমি বেশী প্রজ্ঞাবিশিষ্ট হয়েছি| আমি সত্যিই জানি প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের অর্থ কি!” 17 আমি জানতে চেয়েছিলাম জ্ঞান ও বিদ্যা কি ভাবে অজ্ঞানতার চেয়ে ভালো| কিন্তু আমি জেনেছিলাম য়ে জ্ঞানলাভের চেষ্টা করা মানে শুধুই হাওযার পিছনে ছোটা| 18 জ্ঞানের সঙ্গে আসে হতাশা| য়ে মানুষ যত বেশী জ্ঞান লাভ করে সে তত বেশী দুঃখ পায়|
1 আমি নিজেকে বলেছিলাম, “আমি যতটা সম্ভব সব কিছুকে উপভোগ করব|” কিন্তু আমি জানতে পেরেছিলাম য়ে এসবই অসার| 2 হাসি জিনিষটা বোকামি; আনন্দ কোন উদ্দেশ্য সিদ্ধ করে না| 3 তাই আমি ঠিক করেছিলাম দ্রাক্ষারস পান করে শরীরকে ও জ্ঞানলাভ করে মনকে ভাল রাখব| আমি এরকম বোকামি করেছিলাম কারণ আমি সুখের সন্ধান পেতে চেয়েছিলাম| আমি বুঝতে চেয়েছিলাম এই অল্প দিনের জীবনে মানুষের কি করা উচিত্| 4 তারপর আমি নানা মহত্ কাজ করতে শুরু করেছিলাম| আমি নিজের জন্য নানা জায়গায় বাড়ি তৈরী করেছিলাম| দ্রাক্ষার ক্ষেত তৈরী করেছিলাম| 5 আমি বাগান করেছিলাম| উপবন করেছিলাম, আমি সব রকম ফলের গাছ লাগিয়েছিলাম| 6 আমি নিজের জন্য পুকুর কাটিযে ছিলাম| আমি সেই পুকুরের জল আমার বাগানের গাছে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতাম| 7 আমি পুরুষ ও স্ত্রী এীতদাস কিনেছিলাম এবং আমি যখন তাদের মালিকানা পেলাম তখন তাদের ছেলেমেযে ছিল| আমার অনেক ঐশ্বর্য় ছিল| আমার অনেক গরু ও মেষের পাল ছিল| আমি এত ধনী ছিলাম য়ে সে রকম ধনী জেরুশালেমে কেউ ইতিপূর্বে ছিল না| 8 আমি আমার নিজের জন্য সোনা ও রূপা সংগ্রহ করেছিলাম| আমি বিভিন্ন দেশের রাজাদের কাছ থেকে ধন সংগ্রহ করেছিলাম| আমাকে খুশী করার জন্য অনেক গায়ক ও গাযিকা ছিল| আমার কাছে সবই ছিল যা সকলের কাছে রয়োজনীয়| আমার কাছে সমস্ত রকমের বাদ্যযন্ত্র ছিল| 9 আমি বিরাট ঐশ্বর্য়্য় ও খ্যাতি লাভ করেছিলাম| জেরুশালেমে আমার আগে য়ে সমস্ত লোক ছিল আমি ছিলাম তাদের সবার চেয়ে মহত্| আমার জ্ঞান ছিল সব সময় আমার সহায়| 10 আমার চোখে যা ভাল লাগত এবং আমাকে যা খুশী করত, আমি তা সবই পেতাম| আমি কঠিন পরিশ্রম করে যা কিছু করেছিলাম তা নিয়ে আনন্দিত ছিলাম এবং আমার এই সব জিনিস প্রাপ্য ছিল, কারণ আমি এর জন্য কাজ করেছিলাম| 11 কিন্তু আমি যখন আমার সমস্ত কাজের কথা, পরিশ্রমের কথা চিন্তা করলাম তখন দেখলাম সবই সময়ের অপচয! এসবই ছিল হাওযার পিছনে ছোটা| সূর্য়ের নীচে আমরা যা করি তাতে কোন লাভ নেই| 12 এক জন পুরাতন রাজা ইতিমধ্যেই যা করেছে, এক জন নতুন রাজা তার চেয়ে বেশী কিছু করতে পারে না| তাই আমি আমার বিজ্ঞতার, ভুলভ্রান্তির ও পাগলামির কথা আবার ভাবতে শুরু করলাম| 13 অন্ধকারের থেকে আলো য়েমন ভালো জ্ঞানও ঠিক তেমনি অজ্ঞানতার চেয়ে ভালো| 14 এক জন জ্ঞানী মানুষ তার পথ দেখবার জন্য তার চোখ ব্যবহার করে| কিন্তু য়ে মূর্খ সে শুধুই অন্ধকারে ঘুরে বেড়ায়|কিন্তু আমি লক্ষ্য করলাম য়ে এক জন জ্ঞানী ও মূর্খ উভয়ের পরিসমাপ্তি একই| অবশেষে তারা উভয়েই মারা যায়| 15 আমি নিজে ভেবেছিলাম, “এক জন মূর্খের য়ে পরিণতি হয় আমারও তাই হবে| তবে আমি কেন জ্ঞান লাভের জন্য এত কঠিন পরিশ্রম করব?” আমি নিজেকে বললাম, “জ্ঞানী হওয়াও অর্থহীন|” 16 জ্ঞানী ও মূর্খ উভয়েরই পরিণতি মৃত্যু এবং মানুষ জ্ঞানী বা মূর্খ কাউকেই চিরকাল মনে রাখবে না| তারা যা কিছু করেছিল ভবিষ্যতে তা মানুষ ভুলে যাবে| তাই জ্ঞানী ও মূর্খ প্রকৃত অর্থে একই| 17 এতে আমার জীবনের প্রতি ঘৃণা এসে গেল| আমার মনে হল য়ে পৃথিবীতে আমার কাছে যা কিছু আছে তা সবই অর্থহীন| সবই হাওযাকে ধরবার চেষ্টা করবার মত| 18 সূর্য়ের নীচে আমার সমস্ত কঠিন পরিশ্রমের কাজে আমার ঘৃণা জন্মেছিল| যার জন্য আমি কঠিন পরিশ্রম করে গিয়েছি তা আমার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যাব| আমার কঠিন পরিশ্রমের ফল আমি আমার সঙ্গে রাখতে পারব না| 19 আমি যা কিছু শিখেছি এবং যা কিছু কাজ করেছি তা অন্য কোন লোক নিয়ন্ত্রণ করবে| এমনকি আমি এটাও জানতে পারব না য়ে সে জ্ঞানী হবে কি মূর্খ| এটাও অসার| 20 আমি সূর্য়ের নীচে যা কিছু কাজ করেছি তার জন্য আমি দুঃখিত| 21 এক জন ব্যক্তি তার সমস্ত প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও পারদর্শীতা দিয়ে কঠিন পরিশ্রম করতে পারে| কিন্তু তার পরিশ্রমের ফল তার মৃত্যুর পর অন্য লোক ভোগ করবে| সেই লোকরা বিনা আয়াসে সব কিছু পেয়ে যাবে| এটাও অসার এবং এ একটা ভীষণ পাপ| 22 এক জন ব্যক্তি সূর্য়ের নীচে তার জীবনভর সংগ্রামের পর কতটুকু পায়? 23 সে সারা জীবন পায় শুধু যন্ত্রণা, হতাশা আর কঠিন পরিশ্রম| এমনকি রাতেও সে বিশ্রাম পায় না| এটাও অসার| 24 আমার থেকে বেশী আর কে জীবনকে উপভোগ করার চেষ্টা করেছে? এবং সব শেষে আমি এই শিক্ষাই পেয়েছিলাম| মানুষের পক্ষে সব চেয়ে ভালো কাজ হল খাওয়া-দাওয়া করা ও তার কাজকে উপভোগ করা| আমি দেখেছিলাম ঈশ্বরকে বাদ দিয়ে জীবন উপভোগ করা সম্ভব নয়| 25 26 এক জন মানুষ যদি ভাল কাজ করে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে, তাহলে ঈশ্বর তাকে জ্ঞান, বিদ্যা ও আনন্দ দেন| কিন্তু য়ে পাপী সে শুধুই সংগ্রহ আর বহনের কাজ পাবে| মন্দ লোকের কাছ থেকে নিয়ে ঈশ্বর ভালো লোককে পুরস্কার দেন| কিন্তু সমস্ত কাজই অর্থহীন| সবই হাওযার পিছনে ছোটা|
1 সব কিছুরই একটা নির্দিষ্ট সময় আছে| এবং সূর্য়ের নীচে একটা নির্দিষ্ট সময় সব কিছুই ঘটবে| 2 জন্মেরও য়েমন একটি সময় আছে, মৃত্যুরও তেমনি সময় আছে| রোপণের সময় আছে এবং তুলে ফেলারও সময় আছে| 3 হত্যার এবং সারিয়ে তোলার একটা নির্দিষ্ট সময় আছে| ধ্বংসেরও য়েমন নির্দিষ্ট সময় আছে তেমনি তৈরী করারও নির্দিষ্ট সময় আছে| 4 কান্নারও সময় আছে, হাসারও সময় আছে| দুঃখ পাবার য়েমন সময় আছে, তেমনি আনন্দে নাচ করারও সময় আছে| 5 অস্ত্র নামিযে রাখার, আবার তা তুলে নেবারও নির্দিষ্ট সময় আছে|কাউকে আলিঙ্গন করার য়েমন সময় আছে আবার আলিঙ্গন না করে তাকে এড়িয়ে যাবারও সময় আছে| 6 কাউকে খোঁজার য়েমন সময় আছে আবার তা ফেলে দেবারও সময় আছে| কাউকে রেখে দেওয়া বা কাউকে ছুঁড়ে দেওয়ারও নির্দিষ্ট সময় আছে| 7 জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলার য়েমন সময় আছে তেমনি তা সেলাই করারও সময় আছে| নীরব থাকারও য়েমন সময় আছে তেমনি সরব হওয়ারও সময় আছে| 8 ভালোবাসা এবং ঘৃণা করারও সময় আছে| যুদ্ধেরও একটি নির্দিষ্ট সময় আছে আবার শান্তি রক্ষা করারও সঠিক সময় আছে| 9 এক জন মানুষ কি তার কঠোর পরিশ্রমের কোন মূল্য পায় না? না! 10 আমি দেখেছি ঈশ্বর আমাদের সমস্ত কঠিন পরিশ্রমের কাজ করতে দেন| 11 ঈশ্বর আমাদের তাঁর পৃথিবী নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার ক্ষমতা দিয়েছেন| কিন্তু আমরা ঈশ্বরের কাজের গতি প্রকৃতি সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত হতে পারি না এবং এখন ঈশ্বর সব কিছু সঠিক সময়ই করেন| 12 আমি জানি য়ে মানুষ সারা জীবন সুখে ও আনন্দে বেঁচে থাকতে পারবে- এটাই সর্বমহত্ কাজ| 13 ঈশ্বর চান প্রত্যেকে পানীয়, খাদ্য এবং তাদের কাজের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাক| এই হল ঈশ্বরের উপহার| 14 আমি জানি ঈশ্বর যা করেন তা চিরস্থায়ী হয়| মানুষ ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডকে বাড়াতেও পারে না এবং কমাতেও পারে না| আর ঈশ্বর তা করেছেন কারণ যাতে মানুষ তাঁকে সম্মান জানায| 15 অতীতে য়ে ঘটনাগুলি ঘটেছিল সেগুলিকে আমরা বদলাতে পারব না| ভবিষ্যতে যা ঘটার তা ঘটবে এবং আমরা তাকেও বদলাতে পারব না| কিন্তু ঈশ্বর দেখেন কি সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে| 16 আমি সূর্য়ের নীচে এই ঘটনাগুলির সাক্ষী| আদালতে সাধুতা ও নিষ্কলঙ্ক থাকা উচিত্| কিন্তু আমি সেখানেও দুষ্টতা দেখেছি| 17 তাই আমি নিজেকে বলেছিলাম, “সব কিছুর পেছনেই ঈশ্বরের একটি সময়ানুযায়ী পরিকল্পনা আছে এবং ঈশ্বর নির্দিষ্ট সময়েই মানুষের কাজের বিচার করবেন| ঈশ্বর ভাল এবং খারাপ মানুষদের বিচার করবেন|” 18 মানুষ একে অন্যের সঙ্গে যা যা করে সেই বিষয়ে আমি ভেবেছিলাম এবং আমি নিজেকে বলেছিলাম, “ঈশ্বর মানুষকে পশুর মতোই দেখতে চান|” 19 মানুষ কি পশুদের চেয়ে শ্রেয়? না! কেন? কারণ সব কিছুই অর্থহীন| পশু এবং মানুষদের ক্ষেত্রে একই ব্যাপার ঘটে- উভয়েরই মৃত্যু আসে| মানুষ এবং পশুরা একই “নিঃশ্বাস” নেয়| একটি মৃত মানুষ ও মৃত পশুর মধ্যে কি কোনও পার্থক্য আছে? 20 মানুষ এবং পশুদের দেহ একই ভাবে বিলীন হয়| তারা মাটি থেকেই আসে এবং মাটিতেই ফিরে যায়| 21 কে জানে মানুষের আত্মার কি হয়? কে বলতে পারে পশুর কোন আত্মা যখন মাটির নীচে প্রবেশ করছে তখন হয়তো কোন মানুষের আত্মা ঈশ্বরের কাছে যাচ্ছে? 22 তাই আমি দেখে ছিলাম সব থেকে ভাল উপায় হল এক জন মানুষ তার যা আছে এবং সে যা করেছে তাই নিয়ে আনন্দে মেতে থাকা| এবং এক জন মানুষের তার ভবিষ্যত্ নিয়ে চিন্তিত হওয়া উচিত্ নয়| কেন? কারণ কেউ সেই ব্যক্তিকে তার ভবিষ্যতে কি ঘটবে তা দর্শন করাতে পারবে না|
1 আমি দেখেছিলাম সূর্য়ের নীচে কি ভাবে লোকের ওপর উত্পীড়ন করা হয়ে থাকে| আমি তাদের কান্না শুনেছিলাম| আমি এও দেখেছিলাম য়ে তাদের এই দুর্দশায় সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কেউই নেই| আমি দেখে ছিলাম কিভাবে নিষ্ঠুর লোকরা সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে বসে আছে| তারা যাদের আঘাত করছে তাদের সাহায্যের জন্য কেউ পাশে নেই| 2 আমি ভেবে দেখলাম য়ে যারা বেঁচে আছে তাদের চেয়ে মৃত মানুষদের অবস্থা অনেক ভাল| 3 য়ে সমস্ত লোকরা জন্মের অব্যবহিত পরে মারা গেছে অথবা যারা এখনও জন্মায় নি, তাদের মধ্যে কোন একদল ভালো অবস্থায় আছে! কেন? কেননা এই সূর্য়ের নীচে য়ে সমস্ত মন্দ কাজ হয়ে থাকে তারা তা কখনই দেখেনি| 4 তারপর আমি ভেবেছিলাম, “লোকে কেন এত কঠিন পরিশ্রম করে?” আমি লক্ষ্য করেছিলাম য়ে লোকে সব সময় সফল হতে ও অন্য লোকদের থেকে ভালো হতে চেষ্টা করে| কেন? কারণ তারা ঈর্ষাপরায়ণ| তারা চায় না তার চেয়ে বেশী অন্য লোকে কিছু ভোগ করুক| এসবই অসার, হাওযার পেছনে ছোটা মাত্র| 5 কিছু লোক বলে, “হাত গুটিয়ে কিছু না করে বসে থাকাটা বোকামো| কাজ না করলে না খেতে পেয়ে মরতে হবে|” 6 এটা হয়তো সত্যি| কিন্তু সব সময় বেশী জিনিস পাওয়ার জন্য হাওয়ার পেছনে ছোটার থেকে অল্পে সন্তুষ্ট থাকা ভাল| 7 আমি সূর্য়ের নীচে আরো কিছু অর্থহীন জিনিস দেখলাম| 8 এক জন ব্যক্তির পরিবার না থাকতে পারে| তার ভাই বা সন্তান না থাকতে পারে| কিন্তু তবুও সে কঠিন পরিশ্রম করে যাবে| তার যা আছে তা নিয়ে সে কখনও সন্তুষ্ট থাকবে না| কেন তবে আমি আমার জীবন উপভোগ না করে কঠিন পরিশ্রম করব? এটাও খুব খারাপ ও অর্থহীন| 9 এক জনের চেয়ে দুজন লোক ভাল| দুজন লোক এক সঙ্গে কাজ করলে তার ফল ভাল হয়| 10 যদি কোন ব্যক্তি পড়ে যায়, অপর ব্যক্তি তাকে উঠতে সাহায্য করে| কিন্তু য়ে একা কাজ করে, সে যদি পড়ে তবে তাকে উঠতে সাহায্য করার মতো কেউই থাকে না| 11 যদি দুজন লোক এক সঙ্গে ঘুমোয় তারা উত্তাপ পাবে| কিন্তু য়ে একা শোয সে উত্তাপ থেকে বঞ্চিত হবে| 12 য়ে একা তাকে সহজেই শএুরা হারিয়ে দেবে কিন্তু দুজন লোক এক সঙ্গে থাকলে তাদের হারানো সম্ভব নয়| তিন জন মানুষ একত্র হলে তাদের শক্তি আরো বেশী হবে| তারা হল এক সঙ্গে জড়ানো দড়ির তিনটি অংশের মতো| তাদের শক্তিকে ভাঙ্গা খুবই কঠিন| 13 এক জন দরিদ্র তরুণ নেতা যদি জ্ঞানী হয় তবে সে এক জন বৃদ্ধ বোকা রাজা অপেক্ষা শ্রেয়| সেই বৃদ্ধ রাজা সতর্কবাণীতে কান দেন না| 14 সেই তরুণ শাসক রাজ্যের এক জন গরীব নাগরিক হয়ে জন্মাতে পারেন| তিনি দেশের শাসন ভার নিতে কারাগার থেকে উঠে আসতে পারেন| 15 কিন্তু এ জীবনে আমি মানুষকে দেখে জেনেছি য়ে মানুষ সেই তরুণ নেতাকে অনুসরণ করবে| সেই হবে নতুন রাজা| 16 অনেক মানুষ এই তরুণকে অনুসরণ করবে| কিন্তু পরে এরাই আবার তাঁকে সহ্য করতে পারবে না| এটাও অর্থহীন, হাওযার পিছনে ছোটা|
1 যখন ঈশ্বরের উপাসনা করবে তখন সতর্ক থাকবে| ঈশ্বরকে বোকার মত নৈবেদ্য দেওয়ার থেকে তার কথা শোনা অনেক ভালো| য়ে মূর্খ সে নিজের অজ্ঞাতেই অন্যায় কাজ করে ফেলে| 2 ঈশ্বরকে প্রতিশ্রুতি দিলে সে সম্বন্ধে সতর্ক থেকো| ঈশ্বরকে কিছু বললে সাবধানে বলো| আবেগ চালিত হয়ে হঠাত্ কোন কথা দিয়ে ফেলো না| ঈশ্বর বাস করেন স্বর্গে আর তুমি পৃথিবীতে| তাই ঈশ্বরকে তোমার সামান্য কিছু কথাই বলা উচিত্| এই প্রবাদটি সত্য য়ে: 3 দুঃস্বপ্ন য়েমন অনেক দুঃশ্চিন্তা সঙ্গে নিয়ে আসে, মূর্খ তেমনই একরাশ শব্দ নিয়ে আসে| 4 তুমি ঈশ্বরকে কোন প্রতিশ্রুতি দিলে তা অবশ্যই রক্ষা করবে| তোমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে দেরী কোরো না| ঈশ্বর মূর্খদের প্রতি প্রসন্ন নন| তুমি ঈশ্বরকে যা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ তা দাও| 5 প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালন না করতে পারার থেকে প্রতিশ্রুতি না দেওয়া ভাল| 6 তাই তোমার কথা য়েন তোমার পাপের কারণ না হয়| যাজককে এটা বলো না, “আমি যা বলেছি তার অর্থ এই নয়!” তুমি যদি এরকম কর তাহলে ঈশ্বর রুদ্ধ হয়ে তুমি যার জন্য কাজ করেছ তা ধ্বংস করে ফেলবেন| 7 তোমার অর্থহীন স্বপ্ন ও অহঙ্কার য়েন তোমার বিপদ না ডেকে আনে| তুমি অবশ্যই ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করবে| 8 কিছু দেশে দেখা যায় য়ে দরিদ্র মানুষ বাধ্য হয়ে কঠিন পরিশ্রম করছে| এটা দরিদ্র মানুষদের প্রতি সুবিচার নয়| এটা তাদের স্বার্থবিরোধী| কিন্তু বিস্মিত হয়ো না| য়ে শাসক এই মানুষদের ওপর জোর খাটাচ্ছে, তার ওপরে জোর খাটানোর জন্য রযেছে আরো এক জন শাসক| 9 রাজাও তার লাভের ভাগ পায়| দেশের ধনসম্পদ তাদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়| 10 য়ে ব্যক্তি টাকা ভালোবাসে সে কখনও তার কাছে যা টাকা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারবে না| য়ে ঐশ্বর্য় ভালোবাসে সে যতই পাক না কেন সন্তুষ্ট হতে পারবে না| এসবই অর্থহীন| 11 য়ে ব্যক্তির যত সম্পদ আছে, সেই সম্পদ ব্যয়ের জন্য তত বন্ধুও আছে| তাই ধনী ব্যক্তির প্রকৃত অর্থে কোন লাভই হয় না| সে শুধুই তার সম্পদের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে| 12 য়ে ব্যক্তি সারাদিন কঠিন পরিশ্রম করে সে ঘরে ফিরে শান্তিতে ঘুমোয| সে সামান্য কিছু খেল বা না খেয়ে থাকল সেটা বিষয় নয়| কিন্তু য়ে ধনী ব্যক্তি সে সম্পদ রক্ষার দুশ্চিন্তায রাতে ভাল করে ঘুমোতে পারে না| 13 আমি সূর্য়ের নীচে এক দুঃখজনক ঘটনা লক্ষ্য করেছি| এক জন ব্যক্তি ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করে| কিন্তু এর পরিণাম হয় সমস্যামূলক| 14 এরপর কোন এক অঘটনে সে সব কিছু হারায, এর ফলে সন্তানকে দেওয়ার মতো তার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না| 15 এক জন মানুষ খালি হাতে মাতৃগর্ভ থেকে জন্ম নেয়| আর সে যখন মারা যায়, সে একই ভাবে রিক্ত অবস্থায় বিদায নেয়| সে ফল লাভের জন্য কঠিন পরিশ্রম করে কিন্তু মারা গেলে কোন কিছুই সঙ্গে নিয়ে য়েতে পারে না| 16 এটা দুঃখজনক য়ে এক জন মানুষ য়ে ভাবে পৃথিবীতে আসে সে ভাবেই সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়| এভাবে হাওযার পেছনে ছুটে সে কি পায়? 17 সে কেবল মাত্র যন্ত্রণা এবং দুঃখ পায়| শেষ পর্য়ন্ত সে হয়ে পড়ে হতাশ, বিরক্ত ও ক্ষিপ্ত! 18 এক জন ব্যক্তির পক্ষে সব চেয়ে ভাল সূর্য়ের নীচে খাদ্য, পানীয় ও তার কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া| ঈশ্বর তাকে জীবন দিয়েছেন এবং এটাই তার সর্বস্ব| 19 যদি ঈশ্বর এক জন ব্যক্তিকে ধনসম্পদ ও সেটা ভোগ করার ক্ষমতা দেন তবে তার তা অবশ্যই ভোগ করা উচিত্, কারণ তা হল ঈশ্বরের উপহার| সেই ব্যক্তি অবশ্যই তার প্রাপ্ত জিনিসগুলি স্বীকার করবে এবং তার কাজ উপভোগ করবে, এ হল ঈশ্বরের উপহার| 20 এক জন ব্যক্তি বেশী বছর বাঁচে না| তাই তাকে সারা জীবন এগুলি মনে রাখতে হবে| ঈশ্বর যা করতে চাইবেন তাই তিনি করবেন|
1 আমি সূর্য়ের নীচে আরো কিছু দেখেছি যা ন্যায্য নয়| এটা লোকদের পক্ষে খুবই খারাপ| 2 ঈশ্বর কাউকে প্রচুর ধনসম্পদ, মানসম্মান দেন| সেই ব্যক্তির যা প্রয়োজন বা চাহিদা হতে পারে সে সবই তার আছে| কিন্তু ঈশ্বর তাকে সে সব ভোগ করতে দেন না| কোন এক অপরিচিত এসে তার সমস্ত কিছু অধিকার করে নেয়| এটা খুবই খারাপ ও অর্থহীন| 3 এক জন ব্যক্তি দীর্ঘদিন বাঁচতে পারে| তার 100টি সন্তান থাকতে পারে| কিন্তু সে যদি এসব নিয়ে সন্তুষ্ট না থাকে ও তার মৃত্যুর পর যদি তাকে কেউ মনে না রাখে, তবে আমার মনে হয় য়ে শিশু জন্ম মাত্র মারা গিয়েছে সেও এই ব্যক্তির চেয়ে ভাল| 4 একটা মৃত শিশুর জন্ম প্রকৃতপক্ষে অর্থহীন| সেই শিশুটিকে কোন নাম দেওয়ার আগেই তাকে এক অন্ধকার কবরে সমাধিস্থ করা হয়| 5 সেই শিশুটি কখনও কিছুই জানতে পারে না| সে কখনও সূর্য়েরও মুখ দেখে না| কিন্তু সেই শিশুটিও অনেক বেশী বিশ্রাম পায় সেই ব্যক্তির চেয়ে য়ে ঈশ্বরের দেওয়া উপহার ভোগ করতে পারে না| 6 সেই ব্যক্তি 2,000 বছর বেঁচে থাকতে পারে| কিন্তু যদি সে জীবনকে উপভোগ করতে না পারে তবে য়ে শিশুটির জন্মমাত্র মৃত্যু হয়েছে সে আর এই ব্যক্তি কি একই স্থানে যাবে? 7 এক জন লোক কাজ করে চলে| কেন? নিজের অন্ন সংস্থানের জন্য| কিন্তু সে কখনই সন্তুষ্ট থাকে না| 8 এই বিষয়ে এক জন জ্ঞানী ও মূর্খের মধ্যে কোন তফাত্ নেই| এর চেয়ে এক জন গরীব মানুষ হওয়াও ভাল য়ে জানে কি ভাবে জীবনকে মেনে নিতে হয়| 9 লাভ করবার চেয়ে নিজের যা আছে তা নিয়ে খুশী থাকা ভাল| বেশী লাভের প্রত্যাশা করা হাওযার পিছনে ছোটার মতোই অর্থহীন| 10 যা ঘটেছে তা বহু পূর্বেই স্থির হয়ে ছিল| লোকরা কে বেশী শক্তিশালী এই নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিতর্কের কোন অর্থ হয় না| 11 দীর্ঘ বিতর্ক কোন কাজে লাগে না এবং এটা কি ভালো কাজ করে? 12 এক জন ব্যক্তির অযোগ্য জীবনের ব্যপ্তিতে তার পক্ষে সবচেয়ে ভালো কি তা কে জানে? তার জীবন এক ছায়ার মতো অতিবাহিত হয়| কেউ বলতে পারে না এই পৃথিবীতে পর মূহুর্ত্তে কি হবে|
1 ভাল সুগন্ধের চেয়ে সুনাম শ্রেয়| এক জন মানুষের য়ে দিন জন্ম হয় সেই দিনের থেকে তার মৃত্যুদিন ভাল| 2 উত্সবের গৃহে যাওয়ার চেয়ে শোকের গৃহে যাওয়া ভাল| কেন? কারণ শোকের গৃহে লোকরা সত্যিই জানবে য়ে সব মানুষই মরণশীল| 3 আনন্দের চেয়ে দুঃখ শ্রেয়| কেন? যখন আমরা দুঃখ পাই তখন আমাদের হৃদয় শুদ্ধ হয়| 4 য়ে জ্ঞানী সে মৃত্যুর কথাও ভাবে কিন্তু মূর্খ শুধুই আমোদ-প্রমোদের কথা চিন্তা করে| 5 এক জন মূর্খের দ্বারা প্রশংসিত হওয়ার চেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তির দ্বারা সমালোচিত হওয়াও শ্রেয়| 6 মূর্খের অট্টহাসি হল পাত্রের নীচে জ্বলন্ত কাঁটার মতো যা এতই তাড়াতাড়ি পুড়ে যায় য়ে পাত্রটি উত্তপ্ত পর্য়ন্ত হয় না| এটাও অসার| 7 এক জন জ্ঞানী যদি কারো কাছ থেকে যথেষ্ট অর্থ পায় তবে সে তার জ্ঞানও ভুলে যায়| অর্থ তার বোধশক্তি নষ্ট করে দেয়| 8 কোন কিছু নতুন করে আরম্ভ করবার চেয়ে তাকে শেষ করা ভাল| অধৈর্য়্য় ও অহঙ্কারী হওয়ার চেয়ে শান্ত ও ধৈর্য়্য়শীল হওয়া ভাল| 9 হঠাত্ রেগে ওঠা উচিত্ নয়| কারণ রাগ করা মূর্খামি| 10 একথা বলা উচিত্ নয়, “এখনকার থেকে আগের সময় কেন বেশী ভাল ছিল|” কারণ জ্ঞান আমাদের এই প্রশ্নের দিকে চালিত করে না| 11 সম্পত্তি থাকার চেয়ে জ্ঞান থাকা ভাল| যথেষ্ট সম্পদ ছাড়াও জ্ঞানী ব্যক্তিরা প্রকৃতপক্ষে বেশী লাভবান হন| 12 প্রজ্ঞা ও সম্পদ উভয়েই তোমাকে রক্ষা করতে পারে| কিন্তু য়ে জ্ঞান প্রজ্ঞার মাধ্যমে লাভ করা যায় তা তোমার জীবনকে দীর্ঘ করতে পারে! 13 ঈশ্বর যা করেছেন সে দিকে তাকিযে দেখ| যদি কোন কিছু তোমার ভুলও মনে হয় তবুও তুমি তা পালটাতে পারবে না! 14 জীবন সুন্দর, তাকে উপভোগ কর| কিন্তু জীবন যখন কষ্টকর হবে তখন মনে রেখো ঈশ্বর আমাদের সুসময় ও দুঃসময় দুইই দেন এবং কেউই জানে না ভবিষ্যতে কি হতে পারে| 15 আমার এই অযোগ্য জীবনে আমি অনেক কিছু দেখেছি এবং আমি আরো দেখেছি কি ভাবে দুষ্ট লোক দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে| অথচ ধার্মিক লোক অল্প বয়সে মারা যায়| 16 কেন আত্মহনন করবে? কখনও খুব ভালও হবে না বা খুব খারাপও হবে না| বেশী জ্ঞানী বা বেশী মূর্খ কোনটাই হবে না| কেন তুমি তোমার অন্তিম সময়ের আগে মারা যাবে? 17 18 তুমি এদিক ওদিক দুদিকে থাকার চেষ্টা কর| এমনকি ঈশ্বরের অনুসরণকারীরাও কিছু ভাল ও কিছু মন্দ কাজ করে থাকে| 19 প্রজ্ঞা মানুষকে শক্তি জোগায়| এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি শহরের দশ জন শাসকের চেয়ে বেশী শক্তিশালী| 20 নিশ্চিত ভাবে, এই ভূমণ্ডলে এমন এক জনও ধার্মিক ব্যক্তি নেই য়ে কোন অন্যায় করে নি| 21 মানুষের সব কথায় কান দিও না| তুমি হয়তো শুনবে তোমার ভৃত্য তোমার নিন্দা করছে| 22 এবং তুমি জান য়ে তুমি নিজেও অনেক সময় অন্যদের বদনাম করেছ| 23 আমি আমার জ্ঞান দিয়ে এই সমস্ত কিছু ভেবে দেখেছি| আমি সত্যিকারের জ্ঞানলাভ করতে চেয়েছি| কিন্তু তা অসম্ভব| 24 আমি সমস্ত জিনিসের অস্তিত্বের ধরণ বুঝতে পারি না| এটা কারো পক্ষে বুঝে ওঠা খুবই কঠিন| 25 আমি অধ্যযণ করেছি ও অনেক চেষ্টা করেছি সত্যিকারের জ্ঞান খুঁজে পেতে| আমি সব কিছুর ভেতরকার ব্যাখ্যা খুঁজে পেতে চেয়েছি| আমি কি শিখলাম? আমি জানলাম অসত্ হওয়া বোকামো, মূর্খের মতো কাজ করা পাগলামো| 26 আমি আরো দেখেছিলাম য়ে কিছু নারী হল ভয়ঙ্কর এক ফাঁদের মতো, তাদের হৃদয় জালের মতো ও বাহু শিকলের মতো| এই রকম নারীর ফাঁদে পড়ার চেয়ে মৃত্যুও শ্রেয়| য়ে ঈশ্বরকে অনুসরণ করে সে এদের থেকে দূরে থাকবে| কিন্তু এক জন পাপী এদের হাতে ধরা পড়বে| 27 উপদেশক বলল, “আমি এই সমস্ত কিছু য়োগ করে দেখতে চেয়েছিলাম কোন উত্তর পাওয়া যায় কিনা| আমি এখনও উত্তরের অপেক্ষায রযেছি| আমি কেবল মাত্র একটি জিনিষ খুঁজে পেলাম| হাজার জনের মধ্যে এক জন ভাল মানুষ আছে| কিন্তু আমি এক জনও ভাল মহিলাকে খুঁজে পাই নি| 28 29 আমি আরো একটা জিনিস শিখেছিলাম: “ঈশ্বরই সব ভালো মানুষ তৈরী করেন| কিন্তু মানুষ খারাপ পথে চালিত হয়|”
1 কেউই এক জন জ্ঞানী ব্যক্তির মতো করে কোন জিনিসকে বুঝতে বা ব্যাখ্যা করতে পারবে না| তার জ্ঞানই তাকে সুখী করবে| একমাত্র জ্ঞানই দুঃখকে সুখে পরিণত করতে পারে| 2 আমি সর্বদা রাজার আদেশ মান্য করি| আমি এটা করি কারণ আমি ঈশ্বরের কাছে একটি প্রতিশ্রুতি করেছি| 3 রাজাকে তোমার পরামর্শ জানাতে ভয় পেযো না| এবং কখনও অন্যায়কে সমর্থন কোরো না| কিন্তু মনে রেখো য়ে রাজা তার ইচ্ছানুযাযী আদেশ দেন| 4 রাজার আদেশ দেওয়ার অধিকার আছে এবং কেউই তাকে বলে দিতে পারে না তার কি করা উচিত্| 5 য়ে ব্যক্তি রাজার আদেশ মেনে চলে সরকারের সঙ্গে তার কোন সমস্যা হবে না| এবং এক জন জ্ঞানী লোক জানে ঠিক কোন সময় এবং কি ভাবে রাজার কাছে য়েতে হবে| 6 এমনকি লোকের বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেকটি কাজের একটা সঠিক সময় ও সঠিক পদ্ধতি আছে| 7 আর সে নিশ্চিত ভাবে জানে না কি হতে পারে| কেন? কারণ কেউই তাকে বলতে পারবে না ভবিষ্যতে কি হবে| 8 কোন মানুষেরই তার আত্মাকে ধরে রাখার ক্ষমতা নেই| কেউই মৃত্যুকে আটকাতে পারবে না| যুদ্ধের সময় কোন সৈন্যেরই যেখানে খুশী যাওয়ার স্বাধীনতা নেই| একই ভাবে যদি কোন ব্যক্তি অন্যায় করে তবে সেই অন্যায় তাকে মুক্তি দেয় না| 9 আমি প্রত্যেকটি জিনিষ পর্য়্য়বেক্ষণ করেছি আর ভেবেছি কেন সূর্য়ের নীচে এরকম হয়| আমি এও দেখেছি য়ে এক জন ব্যক্তি কি ভাবে আরেকজন ব্যক্তির ওপর আধিপত্যের জন্য ক্ষমতার পেছনে ছোটে| এটা তার পক্ষে খারাপ| 10 আমি দেখেছি কি ভাবে মন্দ লোকদের অন্ত্য়েষ্টি এযিা সম্পন্ন হয়| ঐসব মন্দ লোক য়থেচ্ছভাবে পবিত্র স্থানে য়েত এবং তারা শহরে প্রকৃতপক্ষে কি করেছিল তা লোকে ভুলে যায়| 11 কখনও কখনও মন্দ লোকরা তাদের খারাপ কাজের জন্য সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি পায় না| এজন্য তারা আরো খারাপ কাজে নিজেদের লিপ্ত করে| 12 এক জন পাপী একশোটি খারাপ কাজ করতে পারে| সে দীর্ঘদিন বেঁচেও থাকতে পারে| কিন্তু আমি এও জানি য়ে ঈশ্বরকে মান্য করা ও শ্রদ্ধা করা অনেক ভাল| 13 মন্দ লোকরা ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে না, তাই তারা কখনও ভাল কিছু পায় না| তারা দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে না| তাদের জীবন সেই ছায়ার মত হয় না যা সূর্য়াস্তের পর দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়| 14 আরো অনেক কিছু এই পৃথিবীতেই ঘটে থাকে যা অর্থহীন| কত সময়ে ভালো লোকের খারাপ হয় আবার খারাপ লোকের ভালো হয়| এর কোন মানে হয় না| 15 তাই আমি স্থির করেছিলাম য়ে জীবনকে উপভোগ করব| কেন? কারণ মানুষের পক্ষে সূর্য়ের নীচে প্রেয হল খাদ্য, পানীয় ও আনন্দের মধ্যে জীবন উপভোগ করা| যাতে তারা প্রতিদিন কাজ করে জীবনকে উপভোগ করতে পারে, যা ঈশ্বর তাদের সূর্য়ের নীচে দিয়েছেন| 16 আমি নিজেকে প্রজ্ঞাপূর্ণ করার দায়িত্ব নিলাম| লোকরা এই জীবনে যা করে থাকে তা আমি ভাল করে লক্ষ্য করেছিলাম| আমি দেখেছিলাম অনেক লোক ব্যস্ত| তারা দিন রাত কাজ করে এবং প্রায় ঘুমোয না বললেই চলে| 17 আমি আরো অনেক কিছু দেখে ছিলাম যা ঈশ্বর করেন| আমি এও দেখে ছিলাম সূর্য়ের নীচে ঈশ্বর যা করেন লোকরা তা অবশ্যই বোঝে| এক জন ব্যক্তি চেষ্টা করতে পারে কিন্তু সে সফল হবে না| এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি বলতে পারেন য়ে তিনি ঈশ্বর যা করেন তা বোঝেন, কিন্তু আসলে তা সত্যি নয়|
1 আমি এ সব কিছু গভীর ভাবে চিন্তা করেছিলাম| আমি দেখে ছিলাম ধার্মিক ও জ্ঞানী লোকরা যা করেন বা তাদের যা হয় সে সবই ঈশ্বরই নিয়ন্ত্রণ করেন| লোকরা জানে না তাদের ঘৃণা করা হবে, না ভালোবাসা হবে| লোকরা এও জানে না ভবিষ্যতে কি হবে| 2 কিন্তু সবার ক্ষেত্রে একই জিনিস ঘটে| ভাল ও মন্দ উভয় ধরণের লোকরাই মারা যান| শুচি ও অশুচি দুধরণের লোকের কাছেই মৃত্যু আসে| যারা ঈশ্বরকে নৈবেদ্য দেয় না তাদের মতো যারা ঈশ্বরকে নৈবেদ্য দেয় তারাও মারা যায়| এক জন ভাল লোকও এক জন পাপীর মত মারা যায়| য়ে ব্যক্তি ঈশ্বরের কাছে বিশেষ প্রতিশ্রুতি দেয় সেও সেই ব্যক্তির মতো মারা যায়, য়ে ঈশ্বরের কাছে প্রতিশ্রুতি দিতে ভয় পায়| 3 সূর্য়ের নীচে যা কিছু খারাপ ঘটনা ঘটে প্রত্যেকের ক্ষেত্রে একই পরিণতি হয়| এটাও খুবই খারাপ য়ে লোকেরা সবসময় মন্দ ও মূর্খের মতো চিন্তা করবে এবং সেই চিন্তা তাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে| 4 য়ে এখনও বেঁচে আছে সে য়েই হোক না কেন তার জন্য আশা আছে| এই প্রবাদটি সত্যি য়ে:জীবিত কুকুর মৃত সিংহের চেয়ে শ্রেয়| 5 জীবিত মানুষ জানে য়ে সে মারা যাবে| কিন্তু মৃত মানুষ কিছু জানে না| মৃত মানুষের আর কোন কিছু পাওয়ার নেই| মানুষ খুব তাড়াতাড়ি তাকে ভুলে যাবে| 6 এক জন ব্যক্তির মৃত্যুর পর ভালবাসা, ঘৃণা, ঈর্ষা কোন কিছু অবশিষ্ট থাকে না| এক জন মৃত ব্যক্তি সূর্য়ের নীচে যা কিছু হবে তাতে আর ভাগ নেবে না| 7 তুমি তোমার খাদ্য ও পানীয়কে উপভোগ কর| যদি তুমি এসব করো ঈশ্বর আনন্দিত হবেন| 8 তোমার পোশাক পরিচ্ছদ পরিষ্কার রাখো এবং মাথায় তেল ব্যবহার করো| 9 সূর্য়ের নীচে তোমার অযোগ্য জীবন যতদিন থাকে ততদিন তোমার স্ত্রী, যাকে তুমি ভালবাস তার সঙ্গে তুমি জীবন উপভোগ কর এবং তোমার কাছে যা কিছু আছে তা হল এই| তোমার জীবনে য়ে সব কাজ তোমায় করতে হবে তা উপভোগ করো| 10 তোমাকে য়ে কাজই দেওয়া হোক না কেন সব সময় সেটা উদ্যমসহ সম্পন্ন করার চেষ্টা করবে| মৃত্যুর পর আমরা সবাই একই জায়গায় যাব| সেখানে কোন কাজ, কোন চিন্তা, কোন জ্ঞান বা কোন প্রজ্ঞা থাকে না| 11 আমি পৃথিবীতে আরো কিছু জিনিস লক্ষ্য করলাম| য়ে জোরে দৌড়ায সে সবসময় প্রতিয়োগীতায জেতে না; একটি শক্তিশালী সৈন্যদল সব সময় যুদ্ধে জেতে না| জ্ঞানী ব্যক্তি সব সময় তার কষ্টোপার্জিত আহার পায় না, য়ে চালাক সে সব সময় সম্পদ পায় না| এক জন বিষ্ঠান ব্যক্তি সব সময় তার প্রাপ্য য়শ পায় না| এমন সময় আসে যখন প্রত্যেকের কাছে আশাতীত প্রতিকুলতা ঘটে| 12 এক জন মানুষ হল সেই জালে পড়া মাছের মত য়ে জানে না তা পরবর্তীকালে কি হবে, সেই ফাঁদে পড়া পাখির মতো য়ে তার ভবিষ্যত জানে না| কিন্তু আমি জানি এক জন মানুষ হঠাত্ই দুর্ভাগ্যের ফাঁদে পড়ে যায়| 13 যখনই আমি কোন মানুষকে প্রজ্ঞার মতো কাজ করতে দেখেছি তা আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে| 14 একটি ছোট শহরে খুব অল্প সংখ্যক লোক বাস করত| এক জন রাজা শহরটি জয় করতে এলেন এবং তার সেনাবাহিনী দিয়ে চারদিক থেকে ঘিরে ফেললেন এবং শহরের চারপাশে অবরোধ গঠন করলেন| 15 কিন্তু সেই শহরে এক জন জ্ঞানী মানুষ বাস করতেন যিনি দরিদ্র ছিলেন| কিন্তু তিনি তার জ্ঞান ব্যবহার করে সেই শহরকে রক্ষা করেন| সব কিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পর মানুষ সেই দরিদ্র লোকটির কথা ভুলে যায়| 16 কিন্তু আমি এখনও বলব য়ে দৈহিক শক্তির চেয়ে জ্ঞান শ্রেয়| সেই লোকেরা দরিদ্র লোকটির জ্ঞানের কথা ভুলে যায়, তার কথা শুনতে ভুলে যায়| কিন্তু তবুও আমি জ্ঞানকে শ্রেয় বলে মনে করি| 17 এক জন জ্ঞানী ব্যক্তির শান্ত, সৌম্য কথা বলা মূর্খদের মধ্যে এক জন শাসকের গর্জনের চেয়ে ঢ়েব ভাল| 18 যুদ্ধে ব্যবহৃত তরবারি ও তীরের চেয়ে জ্ঞান শ্রেয়| কিন্তু এক জন পাপী ভাল জিনিসকে নষ্ট করে ফেলতে পারে|
1 দু-একটি মরা মাছিও সব থেকে ভাল সুগন্ধকে দুর্গন্ধে পরিণত করতে পারে| ঠিক একই ভাবে অনেক জ্ঞান ও সম্মান সামান্য বোকামিতে নষ্ট হয়ে য়েতে পারে| 2 এক জন জ্ঞানী মানুষের চিন্তা তাকে সঠিক পথ দেখায়, কিন্তু মূর্খের চিন্তা তাকে বিপথে নিয়ে যায়| 3 এক জন মূর্খ রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময়ও তার বোকামি প্রদর্শন করে থাকে| তাই সবাই তাকে এক জন মূর্খ হিসেবে জানতে পারে| 4 তোমার মনিব তোমার ওপর রাগ করলেই চাকরি ছেড়ে দিও না| তুমি শান্ত ভাবে সহায়তা করে অনেক বড় ভুল শুধরে নিতে পারবে| 5 আমি সূর্য়ের নীচে আরো কিছু খারাপ জিনিস লক্ষ্য করেছি| এগুলো সেই ধরণের ভুল যা শাসকরা সাধারণতঃ করে থাকে| 6 মূর্খদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়| অন্য দিকে ধনী ব্যক্তিরা গুরুত্বহীন কাজ পায়| 7 আমি দেখেছি যাদের ভৃত্য হওয়া উচিত্ তারা ঘোড়ায় করে যাচ্ছে অথচ যাদের শাসক হওয়ার কথা তারা ভৃত্যের মত এদের পাশে হেঁটে যাচ্ছে| 8 য়ে ব্যক্তি গর্ত খোঁড়ে সে নিজেই গর্তে পড়ে য়েতে পারে| য়ে ব্যক্তি তার শক্তি দিয়ে একটি দেওয়াল ভেঙে ফেলতে পারে সে দেওয়ালের অপর দিকে লুকিয়ে থাকা সাপের কামড়ে মারা য়েতে পারে| 9 য়ে ব্যক্তি বিশাল পাথর সরায় সে পাথরের আঘাতে আহত হতে পারে| য়ে ব্যক্তি গাছ কাটে সেই গাছগুলি তার ওপরেই পড়তে পারে| 10 জ্ঞান য়ে কোন কাজকে সহজ করে দেয়| ভোঁতা ছুরি দিয়ে কোন কিছু কাটা শক্ত কিন্তু সেই ছুরিটাতেই যদি শান দেওয়া যায় তবে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়| জ্ঞানও সেই রকমই| 11 এক জন মানুষ সাপকে বশ করতে জানতে পারে| কিন্তু সেই গুণ অর্থহীন হয়ে পড়ে যখন তার অনুপস্থিতিতে কাউকে সাপে কামড়ায| জ্ঞানও সেই রকমই| 12 জ্ঞানী মানুষের কথায় খ্যাতি আসে| কিন্তু মূর্খের কথা ধ্বংস ডেকে আনে| 13 এক জন মূর্খ শুরু থেকে শেষ পর্য়ন্ত প্রলাপ বকে| 14 এক জন মূর্খ, সে কি করবে সে ব্যাপারে বহু কথা বলে| কিন্তু ভবিষ্যতে কি হবে তা কেউই জানে না| 15 এক জন মূর্খের ঘরে ফেরার পথ খুঁজে নেওয়ার মতো বুদ্ধি থাকে না| তাই সে সারা জীবন খেটে মরে| 16 এক জন রাজা যদি শিশুসুলভ হয় তা য়ে কোন দেশের পক্ষেই খারাপ| আবার কোন দেশের শাসক যদি ভোজন বিলাসে মত্ত থাকে সব সময় সেটা দেশের পক্ষে ভালো নয়| 17 কিন্তু যদি কোন রাজা সদবংশজাত হয় তা দেশের পক্ষে মঙ্গলকর| যদি কোন দেশের শাসকগণ, আনন্দের জন্য নয় কিন্তু শক্তির জন্য যথাসময়ে খায় তাহলে তা দেশের পক্ষে মঙ্গলজনক কারণ তারা পরিমিত জীবনযাপন করেন| 18 য়ে মানুষ অলস হয় তার ছাদ ফুটো হয়ে এমে বাড়ি ভেঙে পড়ে| 19 খাদ্য ও দ্রাক্ষারস মানুষের জীবনকে উপভোগ্য করে তোলে| অর্থ অনেক সমস্যার সমাধান করে দেয়| 20 রাজার সম্বন্ধে খারাপ কথা বলো না| তার সম্বন্ধে খারাপ কিছু ভেবো না| তুমি যদি ঘরে একাও থাক তাহলেও কোন ধনী ব্যক্তির সম্পর্কে খারাপ কিছু বোলো না| কেন? কারণ একটা ছোট পাখিও উড়ে গিয়ে সবাইকে সে কথা বলে দিতে পারে|
1 বিভিন্ন রকমের কাজ করার চেষ্টা করো| কিছু সময় পরে তোমার ভাল কাজের ফল তুমি পেয়ে যাবে| 2 তোমার যা আছে তা তুমি বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ কর| তুমি জান না পৃথিবীতে কত কিছু খারাপ ঘটতে পারে| 3 কিছু জিনিস আছে যার সম্বন্ধে তুমি নিশ্চিত হতে পারো| যদি মেঘ জলকণায় পূর্ণ থাকে তা থেকে বৃষ্টি হবেই| উত্তরে বা দক্ষিণে কোন দিকেই হোক, কোন গাছ যদি পড়ে যায় তা সেখানেই থাকবে| 4 যদি কোন ব্যক্তি নিখুঁত আবহাওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকে সে তবে কোন দিনই বীজ বপন করতে পারবে না| যদি কোন ব্যক্তি বৃষ্টিকে ভয় পায় তবে সে কখনই ফসল কাটতে পারবে না| 5 তোমরা জানো না বাতাস কোথায় বয়| তোমরা জান না কি ভাবে শিশুর মাতৃগর্ভে নিঃশ্বাস আসে| সেই রকমই ঈশ্বর কি করবেন আমাদের জানা নেই| তিনি সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন| 6 তাই, সকাল থেকেই রোপণ করতে শুরু কর ও সন্ধ্য়ের সময় অন্য কাজ করো| কেন? কারণ তুমি জান না কিসে তুমি ধনী হবে| অথবা উভয়ই সমান ভাবে ভালো| 7 আলো সুন্দর| সূর্য়ের আলো দেখাও ভাল| 8 তোমার জীবনের প্রতিটি দিন উপভোগ করো| কিন্তু যখন কঠিন সময় আসবে তখন ভালো সময়ের কথা স্মরণে রেখো| কারণ নানা অনর্থক ব্যাপার ঘটবে| 9 যতক্ষণ তোমার য়ৌবন আছে ততক্ষণ তা উপভোগ কর| সুখে থাকো, তোমার প্রাণ যা চায় তাই কর| কিন্তু মনে রেখো ঈশ্বর তোমার সব কাজের বিচার করবেন| 10 ক্রোধ ষ্ঠারা পরিচালিত হয়ো না| তোমার দেহকে কোন মন্দ কাজ করতে দিও না, কারণ য়ৌবন এবং ইচ্ছা কোন কাজে লাগে না|
1 বৃদ্ধ বয়সে য়ে সময়ে তোমার জীবনকে ব্যর্থ মনে হবে সেই সময় আসার আগে তোমার য়ৌবনেই তুমি সৃষ্টিকর্তার কথা স্মরণ কর| 2 চন্দ্র, সূর্য় এবং তারা তোমার কাছে অন্ধকার হয়ে আসার আগেই য়ৌবনকালে তুমি তোমার সৃষ্টিকর্তার কথা ভাবো| একটার পর একটা ঝড়ের মতোই সমস্যা আসে| 3 সেই সময় তোমার বাহুতে শক্তি থাকবে না| তোমার পা দুর্বল হয়ে বেঁকে যাবে| তোমার দাঁত পড়ে যাবে আর খাওয়ার বা চিবিয়ে খাওয়ার ক্ষমতা থাকবে না| তোমার দৃষ্টিশক্তি কমে যাবে| 4 তোমার শ্রবণ ক্ষমতা কমে যাবে| তুমি রাস্তার শব্দ শুনতে পাবে না| এমনকি পাথর দিয়ে শস্যদানা ভাঙার শব্দও তুমি শুনতে পাবে না| তুমি কোন নারী কণ্ঠের গান শুনতে পাবে না| কিন্তু ভোর বেলায কোন একটি পাখির গানও তোমাকে জাগিয়ে দেবে কারণ তুমি ঘুমোতে পারবে না| 5 তুমি উঁচু জায়গায় চড়তে ভয় পাবে, তুমি তোমার পথের ওপর পড়ে থাকা প্রত্যেকটি ক্ষুদ্র জিনিসের ওপর পা দিতে ভয় পাবে| তোমার চুল বাদাম গাছের ফুলের মতো সাদা হয়ে যাবে| তুমি হাঁটার সময়ে ফড়িংযের মতো নিজেকে বয়ে বেড়াবে| তুমি বাঁচার শক্তি হারিয়ে ফেলবে| আর এরপর তুমি তোমার সমাধিতে স্থান পাবে| বিলাপকারীরা তোমার শোকযাত্রায সমবেত হবে| 6 য়ৌবনে রূপোর তার ছিঁড়ে যাওয়ার আগে, সোনার পাত্র ভেঙ্গে যাওয়ার আগে তুমি তোমার সৃষ্টিকর্তার কথা স্মরণ কর| ভাঙ্গা পাত্রের মতো তোমার জীবন অর্থহীন হওয়ার আগে, কুযোতে ভেঙে পড়ে যাওয়া পাথরের চাকার মতো তোমার জীবন নষ্ট হওয়ার আগে তুমি সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ কর| 7 তোমার শরীর মাটি থেকে এসেছে এবং তোমার মৃত্যুর পর তোমার শরীর আবার মাটিতেই মিশে যাবে, কিন্তু তোমার আত্মা এসেছে ঈশ্বরের কাছ থেকে, তোমার মৃত্যুর পর তা আবার ঈশ্বরের কাছেই ফিরে যাবে| 8 সব কিছুই অর্থহীন, উপদেশক বলেছেন সবই সময়ের অপচয়| 9 উপদেশক তাঁর প্রজ্ঞা অন্য লোকদের শিক্ষার কাজে লাগাতেন| উপদেশক অত্যন্ত যত্নসহকারে অনেক জ্ঞানের বাণী অধ্যযণ করেছিলেন ও সেগুলিকে একত্র করে সংগ্রহ করেছিলেন| 10 উপদেশক সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন এবং তিনিসত্য ও নির্ভরযোগ্য নীতিকথা লিখে গিয়েছিলেন| 11 জ্ঞানী ব্যক্তির কথা হল সেই তীক্ষ্ণ লাঠির মত যা মানুষ পশুদের সঠিক রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করে| সেই উপদেশ হল শক্ত পেয়ালার মতো যা ভাঙে না| সেই শিক্ষামালা তোমাকে সঠিক রাস্তা দেখাবে| ঐসব নীতির বাণীই এসেছিল একই মেষপালকের (ঈশ্বরের) কাছ থেকে| 12 তাই ঐ বাণীগুলি পড় কিন্তু পুত্র ও অন্য বই সম্বন্ধে সাবধান থেকো| মানুষ সর্বদাই বই লিখছে এবং অতিরিক্ত অধ্যযন তোমাকে ক্লান্ত করে দেবে| 13 এই বইতে যা লেখা তার থেকে কি শিক্ষা আমরা নেবো? মানুষের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করা ও তার আদেশ মান্য করা| কেন? কারণ মানুষ যা কিছু করে ঈশ্বর তা জানেন, সেটা গুপ্ত কিছু হলেও ঈশ্বর তা জানেন| তিনি ভাল ও মন্দ সব বিষয়ই জানেন| মানুষ যা কিছু করবে ঈশ্বর তার বিচার করবেন| 14
1 শলোমনের অনন্য সাধারণ গীত| 2 চুম্বনে চুম্বনে আমায় ভরিয়ে দাও| কারণ তোমার ভালোবাসা দ্রাক্ষারসের চেয়েও ভাল| 3 তোমার সুগন্ধি তেল দারুণ সৌরভময| তোমার নাম শ্রেষ্ঠতম সুগন্ধির মত| তাই যুবতী নারীরা তোমাকে ভালোবাসে| 4 আমাকে তোমার সঙ্গে নিয়ে চল! চল, তোমাতে আমাতে কোথাও পালিয়ে যাই! রাজা আমাকে তাঁর কক্ষে নিয়ে গেলেন|আমরা তোমাতে উল্লসিত এবং আনন্দিত| আমরা তোমার প্রেমাচরণের প্রশংসা করব- যা দ্রাক্ষারসের চেয়েও ভাল| যুবতী নারীরা য়ে তোমায় ভালোবাসে তা আর আশ্চর্য়্য় কি? 5 হে জেরুশালেমের কন্যারা, আমি কৃষ্ণবর্ণা এবং সুন্দরী, আমি কেদরের তাঁবুর মতো কালো এবং শলোমনের পর্দার মতো সুন্দর| 6 আমি কি কালো! সে দিকে তোমরা দেখো না কারণ সূর্য় আমাকে কালো করেই দেখায়| আমার ভাইরা আমার প্রতি রাগে জ্বলছে| তারা আমাকে তাদের দ্রাক্ষা ক্ষেতের দেখাশোনা করতে বাধ্য করেছে| তাই আমি আমার নিজের দ্রাক্ষা ক্ষেতেরযত্ন নিতে পারি নি| 7 আমি আমার সকল অন্তঃকরণ দিয়ে তোমাকে ভালোবাসি! আমায় বল, কোথায় তুমি তোমার মেষ চরাও? দুপুরে কোথায় তুমি ওদের বিশ্রাম করাও? যদি না হয়, তোমাকে খুঁজতে গিয়ে আমাকে তোমার সঙ্গী বন্ধুদের চার পাশে ভ্রাম্যময়ী বেশ্যার মত দেখাবে! 8 আমাকে কোথায় খুঁজতে হবে যদি তুমি না জানো, তবে হে সুন্দরী নারী, তুমি মেষের পালগুলিকে অনুসরণ কর এবং তোমার ছাগল ছানাগুলিকে মেষপালকদের তাঁবুর কাছে চরাও| 9 হে আমার প্রিয়তমা, আমার কাছে তুমি ফরৌণের রথ টেনে নিয়ে যাওয়া য়ৌনাঙ্গ ছেদ না করা য়ে কোন ঘোড়ীর চেয়ে বেশী উদ্দীপক| ঐ ঘোড়াগুলোর মুখের পাশে এবং গলার চারপাশে অপূর্ব নক্শা করা আছে| 10 তোমার কপোল গহনার দ্বারা সুন্দরভাবে সজ্জিত| তোমার কণ্ঠদেশ একটি কণ্ঠহার দ্বারা সজ্জিত| 11 চল আমরা তোমার জন্য রৌপ্য খচিত সোনার গহনা তৈরী করি| 12 রাজা যখন আমার পাশে তাঁর কেদারায় শুয়েছিলেন তখন আমার সুগন্ধির ঘ্রাণ তাঁর কাছে গিয়ে পৌঁছেছিল| 13 আমার প্রিয়তম আমার কাছে ভেষজ সুগন্ধির সৌরভের মত, আমার স্তনযুগলের মধ্যে সারাটা রাত্রি ধরে বিরাজিত থাকে| 14 আমার প্রিয়তম আমার কাছে, ঐন্-গদীয় দ্রাক্ষা ক্ষেতের মেহেন্দি ফুলের মত সুন্দর| 15 হে আমার প্রিয়তমা, তুমি সত্যিই সুন্দর! আহা! কি সুন্দর! তোমার চোখ দুটি পারাবতের মতই কোমল| 16 হে মম প্রিয়তম, তুমি অনুপমা! এবং তুমি প্রচণ্ড আকর্ষণীয! আমাদের শয্যা সবুজ ঘাসের বাগানের মতোই মনোরম! 17 আমাদের ঘরের কড়িকাঠগুলি এরস কাঠের এবং বরগাগুলি দেবদারু কাঠে নির্মিত|
1 আমিই শারোণের গোলাপ এবং উপত্যকার শাপলাফুল| 2 হে আমার প্রিয়তমা, সুন্দরী নারীদের মধ্যে তুমি য়েন কাঁটার মাঝখানে শাপলাফুল! 3 আমার প্রিয়তম, অন্যান্য পুরুষদের মধ্যে জংলী গাছের মধ্যে তুমি একটি দুর্লভ আপেল গাছের মত!আমার প্রিয়তমের ছায়ায বসে আমি তার সুমিষ্ট ফলের আস্বাদ গ্রহণ করি| 4 আমার প্রিয়তম আমাকে তার পান-শালায নিয়ে গেল এবং আমার প্রতি তার প্রেম প্রকটিত করলো| 5 শুকনো ফল দিয়ে আমায় উজ্জীবিত কর| আপেল দিয়ে আমায় সঞ্জীবিত কর, কারণ আমি প্রেমে ব্বিশ হয়ে আছি| 6 আমার প্রেমিকের বাঁ হাত আমার মাথার নীচে রযেছে এবং তার ডান হাতে সে আমায় জড়িয়ে ধরেছে| 7 হে জেরুশালেমের কন্যাগণ, গজলা হরিণ এবং বন্য হরিণের নামে আমার কাছে প্রতিশ্রুতি কর যতক্ষণ পর্য়ন্ত প্রস্তুত না হয়, ভালবাসাকে জাগিও না| 8 শোন! আমার প্রেমিক আসছে| সে লাফ দিয়ে পর্বত পার হচ্ছে এবং পাহাড় ডিঙিযে আসছে| 9 আমার প্রিয়তমটি একটি মৃগের মতো বা হরিণ শাবকের মতো| দেখ, সে আমাদের দেওয়ালের অন্য দিকে দাঁড়িয়ে আছে, সে জানালার ভেতর দিয়ে বাইরে দেখছে| সে জানালার খড়খড়ির ভেতর দিয়ে দেখছে| 10 আমার প্রিয়তম আমাকে বলে, “ওঠো প্রিয়তম আমার, অদ্বিতীয় অনন্য আমার সঙ্গে চল! আমরা চলে যাই! 11 দেখ, শীত গত হয়েছে, বর্ষাকালও চলে গেছে| 12 মাঠে মাঠে ফুল ফুটছে, পাখিদের গান গাইবার সময় এসে গেছে! ঐ শোন, পারাবতের ডাক শোনা যাচ্ছে| 13 ডুমুরের ডালে ডালে কচি ডুমুর ধরেছে| দ্রাক্ষার মুকুলের গন্ধে চারিদিক সুবাসিত| ওঠো, প্রিয়তম আমার, অদ্বিতীয় অনন্য আমার, চল! আমরা চলে যাই!” 14 হে আমার কপোত, পর্বতের পেছনে কেন লুকিয়ে আছো? তোমাকে দেখতে দাও, তোমার স্বর শুনতে দাও, তোমার কণ্ঠস্বর অতীব মধুর, এবং তুমি সত্যিই সুন্দর! 15 আমাদের জন্য শিযালগুলোকে ধর| ঐ ছোট্ট শিযালগুলো দ্রাক্ষা ক্ষেত নষ্ট করে! আমাদের দ্রাক্ষাক্ষেত এখন ফুলে ফুলে ভরা| 16 আমার প্রিয়তম এক মাত্র আমারই এবং আমিও এক মাত্র তারই! তিনি শাপলা ফুলের মধ্যে চরান| 17 ছায়া বিলীন হয়ে যাওয়ার আগে দিগন্তের শেষ নিঃশ্বাস (বাতাস) যখন প্রবাহিত হয়, তখন, আমার প্রিয়তম, নবীন হরিণের মত সুউচ্চ বেথর পর্বতে ফিরে এসো!
1 সারারাত ধরে আমি আমার প্রেমিককে কামনা করে বিছানায পড়ে ছিলাম| যাকে আমি ভালোবাসি তাকে খুঁজেছি, কিন্তু আমি তাকে পাই নি! 2 আমি শয্যা ত্যাগ করে এখনি উঠে পড়বো! আমি সারা শহরে ঘুরবো| প্রত্যেকটি রাস্তার চৌমাথায় আমি আমার ভালোবাসার মানুষ খুঁজবো| আমি তাকে অনেক খুঁজেছি, কিন্তু আমি তাকে পাই নি! 3 নগরে যারা পাহারা দেয় সেই প্রহরীরা আমায় দেখেছে| আমি তাদের জিজ্ঞাসা করলাম, “যাকে আমি ভালোবাসি তোমরা কি তাকে দেখেছো?” 4 প্রহরীদের অতিক্রম করার পরেই আমি আমার ভালবাসার মানুষকে খুঁজে পেলাম! আমি তাকে জড়িয়ে ধরলাম এবং যতক্ষণ পর্য়ন্ত না আমার মায়ের বাড়ীতে এবং য়ে ঘরে মা আমায় জন্ম দিয়েছিলেন সেখানে এলাম, ততক্ষণ আমি তাকে য়েতে দিই নি| 5 হে জেরুশালেমের রমণীগণ, গজলা হরিণ এবং বন্য হরিণের নামে আমার কাছে প্রতিশ্রুতি কর| যতক্ষণ পর্য়ন্ত আমি বাসনা না করি, ততক্ষণ প্রেমকে জাগিও না| 6 মরুভূমি থেকে কে ঐ রমণী আসছে? সে গুগ্গুল্, ধূনো ও বিদেশী মশলার গন্ধ নিয়ে একটা ধোঁযার মেঘের মত আসছে| 7 ঐ দেখ, শলোমনের পাল্কী| ইস্রায়েলের শক্তিশালী 60 জন সৈন্য তাঁকে ঘিরে আছে! 8 ওরা প্রত্যেকেই সুদক্ষ যোদ্ধা; রাতে য়ে কোন আক্রমণের মুখোমুখি হবার জন্য ওদের তরবারি সবসময় প্রস্তুত আছে! 9 রাজা শলোমন তাঁর নিজের জন্য লিবানোনের এরস কাঠ দিয়ে একটি ভ্রমণের সিংহাসন বানিয়েছেন| 10 এর স্তম্ভগুলি রূপোর তৈরী| ভিত্তিটি সোনা দিয়ে তৈরী| এর আসনখানি বেগুনী রঙের কাপড়ে ঢাকা| ঐ আসনখানি জেরুশালেমের নারীদের ভালোবাসার দ্বারাখচিত ও অলংকৃত| 11 হে সিয়োনের রমণীরা, তোমরা বেরিয়ে এসে রাজা শলোমনকে দেখ, তাঁর আনন্দের দিনে তাঁর বিয়ের দিনে, তাঁর মা য়ে মুকুট পরিযে দিয়েছেন তাঁর মাথায়, তা দেখ!
1 প্রিয়তমা আমার, তুমি অনন্যা! সত্যি, তুমি সুন্দরী! ঘোমটার অন্তরালে তোমার চোখ দুটি য়েন কপোতী| তোমার চুল গিলিয়দ পর্বতের ঢাল বেযে নেমে আসা মেষের পালের মতই| 2 স্নানের পর মেষের দল য়েমন সারিবদ্ধ এবং সুবিন্যস্ত থাকে, তোমার দাঁতগুলো তেমনি সুন্দর| তারা প্রত্যেকেই য়মজ শাবকের জন্ম দিয়েছে এবং একটা মেষও তার শাবককে হারাযনি| 3 তোমার ঠোঁট রক্তিম সুতোর মত| তোমার মুখখানি অনুপম ঘোমটার আড়ালে তোমার গণ্ডদেশ য়েন দু-আধখানা করা ডালিম ফলের মত| 4 তোমার কণ্ঠদেশ পাথরের সারি দিয়ে বানানো দায়ূদের স্তম্ভের মত| শক্তিশালী বীরদের শত শত ঢাল ঝুলিয়ে রাখার জন্য য়ে স্তম্ভ নির্মিত হয়, তোমার কণ্ঠদেশ সেই স্তম্ভের মত সুন্দর| 5 তোমার স্তন দুটি শালুক ফুলের মাঝে চরে বেড়ানো য়মজ হরিণ শাবকের মত| 6 দিনের ছায়া যখন মিলিয়ে আসবে, দিনের শেষ বাতাস যখন প্রবাহিত হবে তখন আমি সেই সুগন্ধির পাহাড়ে এবং সেই গুগ্গুল্রে পর্বতে যাবো| 7 প্রিয়তমা আমার, তুমি সর্বাঙ্গ সুন্দরী| কোথাও তোমার এতটুকু খুঁত নেই! 8 বধূ আমার, আমার সঙ্গে লিবানোন থেকে এসো| লিবানোন থেকে আমার সঙ্গে এসো| অমানার পর্বত থেকে এসো, শনীর ও হর্ম্মোণের চূড়া থেকে এসো, সিংহের গুহাদেশ থেকে এসো, এবং চিতাবাঘের পর্বত থেকে এসো! 9 প্রিযা আমার, বধূ আমার, তুমি আমায় উত্সাহিত করেছো| তুমি আমার হৃদয়কে বন্দী করেছো| তুমি তোমার অলঙ্কারের একটি মুক্তা দিয়ে, তোমার নয়নের একটি কটাক্ষ দিয়ে আমার মন হরণ করেছো! 10 প্রিযা আমার, বধূ আমার, তোমার ভালোবাসা কত মনোরম! তোমার ভালোবাসা দ্রাক্ষারসের চেয়েও সুন্দর, তোমার দেহের ঘ্রাণ য়ে কোন সুগন্ধির চেয়েও উত্কৃষ্ট! 11 বধূ আমার, তোমার ওষ্ঠাধর মধুময, তোমার জিহবাগ্রে দুধ ও মধুর স্বাদ| তোমার বেশভূষায লিবানোনের সুগন্ধ আছে| 12 প্রিযা আমার, বধূ আমার, তুমি একটি সুরক্ষিত উদ্য়ানের মত পবিত্র| তুমি একটি সুরক্ষিত সরোবরের মত এবং বদ্ধ ঝর্ণার মত| 13 তোমার ডালপালাগুলি সুদৃশ্য ডালিম এবং রসে ভরা হেন্না উদ্য়ানের মত| 14 য়ে গাছে মেহেন্দি, গন্ধদ্রব্য, জাফরান, রজন ইত্যাদি হয়, সেই গাছের মতই তোমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুন্দর| তোমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সৌরভে ভরা চন্দন গাছের বাগানের মতোই সুন্দর| 15 তুমি উদ্যানের ঝর্ণার মত স্বচ্ছ টলটলে, জলের প্রস্রবনের কুযোর মত, তুমি লিবানোনের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার মতোই সুন্দর| 16 হে উত্তরের বাতাস, তুমি প্রবাহিত হও! হে দক্ষিণা বাতাস, তুমি এসো! আমার বাগানের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হও এবং এর সুমিষ্ট সৌরভ ছড়িয়ে দাও| আমার প্রিয়তম তার বাগানে প্রবেশ করুক এবং বাগানের সুন্দর ফলগুলো ভোজন করুক|
1 ভগিনী আমার, বধূ আমার, আমি আমার বাগানে প্রবেশ করব| আমি আমার সুগন্ধি দ্রব্যাদি মশলাপাতিসহ সংগ্রহ করব| আমি আমার মৌচাক মধুসহ পান করব| আমি আমার দু3 ও দ্রাক্ষারস পান করব|বন্ধুগণ, খাও, পান কর! হৃদয় তৃপ্ত করে ভালোবাসা পান কর! 2 আমি ঘুমিয়ে রযেছি কিন্তু আমার অন্তর জেগে রযেছে| শোন, আমার প্রিয়তম দুযারে করাঘাত করছে| “আমার কাছে উন্মুক্ত হও, বধূ আমার, আমার প্রিযা, কপোতি আমার, পূর্ণমূর্তি আমার! আমার মাথা শিশিরে সিক্ত হয়ে গেছে| আমার মাথার চুল রাতের কুযাশায আর্দ্র হয়ে গেছে|” 3 “আমি আমার বসন ত্যাগ করেছি| আবার আমি তা পরতে চাই না| আমি আমার পা দুটি ধুয়ে ফেলেছি| আমি তাতে আর কাদা লাগাতে চাই না|” 4 আমার প্রিয়তম দ্বারে ছিদ্রে হাত রাখলো এবং তার জন্য আমার অন্তর ব্যাকুল হল| 5 প্রিয়তমের জন্য খুলে দিতে আমি উঠলাম এবং আমার হাত থেকে সুগন্ধি পড়ছিল, এবং আমার হাতের তরল সুগন্ধি আমার আঙ্গুল দিয়ে দরজার খিলের ওপর গড়িযে পড়ছিল| 6 আমি আমার প্রিয়তমের কাছে উন্মুক্ত হয়েছিলাম কিন্তু আমার প্রিয়তম চলে গিয়েছিল! সে যখন ফিরে গেল তখন আমার প্রায় মরার মত অবস্থা| আমি তাকে খুঁজেছিলাম কিন্তু আমি তাকে খুঁজে পাই নি| আমি তাকে ডেকেছিলাম কিন্তু সে আমাকে সাড়া দেয় নি| 7 য়ে প্রহরীরা নগর পাহারা দিচ্ছিলো তারা আমাকে দেখতে পেলো| তারা আমায় আঘাত করলো| তারা আমায় আহত করলো| প্রাচীরের রক্ষীরা আমার কাপড়চোপড় কেড়ে নিল| 8 হে জেরুশালেমের কন্যাগণ, তোমাদের বলে রাখছি, যদি আমার প্রিয়তমকে খুঁজে পাও তাকে বলো, আমি তার প্রতি ভালবাসায কাতর| 9 সকল নারীদের মধ্যে হে সুন্দরী শ্রেষ্ঠা, কোন্ দিক থেকে তোমার প্রিয়তম অন্যান্য প্রেমিকদের চেয়ে ভাল? অন্যান্য প্রেমিকদের চেয়ে সে কি ভাবে ভাল য়ে তুমি আমাদের এমন প্রতিশ্রুতি করতে বলছো? 10 আমার প্রিয়তম উজ্জ্বল এবং তামাটে বর্ণ| সে 10,000 লোকের মধ্যে বিশিষ্ট| 11 তার মাথা খাঁটি সোনার মতোই উন্নত| তার কোঁকড়ানো চুল দাঁড়কাকের রঙের মতই মিশ্কালো| 12 তার দুটি চোখ ঝর্ণার ধারের কপোতের মত| দুধের সাগরে কপোতের মত, অলঙ্কারের মত| 13 তার গালদুটি একটি মসলার বাগানের মত, যা সুগন্ধ দেয়| পদ্মফুলের পাপড়ির মত তার ওষ্ঠাধর থেকে তরল সুগন্ধি গড়িযে পড়ে| 14 তার বাহু রত্নখচিত সোনার দণ্ডের মত| তার উদর হাতির দাঁতের তৈরী এবং নীল মরকতে ঢাকা| 15 তার পা দুটি সোনার পাযার ওপরে মর্মর স্তম্ভের মত| তার চেহারা লিবানোনের শ্রেষ্ঠতম গাছের মত ! 16 জেরুশালেমের যুবতী রমণীরা, তার মুখই মিষ্টস্বাদস্বরূপ| সে সবকিছু নিয়েই মনোরম| এই আমার প্রেমিক| এই আমার প্রিয়|
1 রমণীদের মধ্যে সুন্দরী শ্রেষ্ঠা, তোমার প্রেমিক কোথায় গেছে? তোমার প্রিয়তম কোন দিকে গেছে? আমাদের বল, তাহলে, তাকে খোঁজার ব্যাপারে, আমরা তোমাকে সাহায্য করতে পারি| 2 আমার প্রিয়তম তার মশলার বাগানে গিয়েছে| সে তার বাগানে ঘুরে বেড়াতে ও পদ্ম ফুল তুলতে গেছে| 3 আমি এক মাত্র আমার প্রেমিকের এবং আমার প্রেমিক এক মাত্র আমারই| সে পদ্ম বনে ঘুরে বেড়ায়| 4 হে প্রিয়তমা, তুমি তির্সার মত সুন্দর, জেরুশালেমের মত মনোরম, দুর্গ দ্বারা রক্ষিত নগরীর মত ভয়ঙ্কর| 5 আমার দিকে চেয়ে দেখো না! তোমার দুটি চোখ আমায় অস্থির করে দেয়! তোমার কেশরাশি, গিলিয়দ পর্বতের ঢাল বেযে নেমে আসা একদল ছাগলের মত| 6 তোমার দাঁতগুলো সদ্য স্নাত ছাগীর মত| তারা প্রত্যেকেই য়মজ বত্স জন্ম দিয়েছে এবং একটা মেষও তার শাবককে হারায নি| 7 তোমার গণ্ডদেশ ডালিম ফলের দুটি আধখানা টুকরোর মতো| 8 ষাট জন রাণী বা 80 জন উপপত্নী থাকতে পারে, এমনকি অগণিত তরুণীরাও থাকতে পারে, 9 কিন্তু আমার পরিপূর্ণা, আমার কপোতী অদ্বিতীযা| সে তার মায়ের কাছে অনন্যা, য়ে তাকে জন্ম দিয়েছিল তার সব থেকে প্রিয় সন্তান! যুবতী রমণীরা তার দিকে চেয়ে দেখে এবং তার রূপের প্রশংসা করে| শুধু তাই নয়, রাণীরা এবং উপপত্নীরাও তার প্রশংসা করে| 10 ঐ তরুণী মেযেটি কে? মেযেটি ভোরের আভার মতই উজ্জ্বল| সে চাঁদের মত সুন্দর| সে সূর্য়্য়ের মত উজ্জ্বল| সে শোভাযাত্রার তারাদের মত সম্ভ্রান্ত| 11 উপত্যকার ফল দেখতে আমি আখরোটের বাগানে গেলাম, দেখতে গেলাম দ্রাক্ষাক্ষেতে অথবা ডালিমগাছে ফল ধরেছে কিনা| 12 আমি নিজেও জানতাম না য়ে সে আমাকে রথের ওপর যুবরাজ হিসেবে বসিযেছে| 13 ফিরে এসো, ফিরে এসো শূলম্মীয!ফিরে এসো, ফিরে এসো, যাতে আমরা তোমায় চেয়ে দেখতে পারি| শূলম্মীযের দিকে তুমি কেন তাকিযে দেখ? সে য়ে মহনযিমে বিজয় নৃত্যে মগ্ন|
1 রাজকন্যে, তোমার জুতো পরা পা দুখানি কত সুন্দর! তোমার বএ রেখায়িত দুটি ঊরু শিল্পীর তৈরী অলঙ্কারের মত| 2 তোমার নাভি গোলাকার পাত্রের মত, তা য়েন সব সময় দ্রাক্ষারসে পূর্ণ থাকে| তোমার উদর দেশ পদ্ম দিয়ে ঘেরা স্তূপীকৃত গমের মত| 3 তোমার স্তন দুটি গজলা হরিণের য়মজ শাবকের মত| 4 তোমার কণ্ঠদেশ হাতির দাঁতের স্তম্ভের মত| তোমার দুটি চোখ বত্-রব্বীমের দ্বারবর্তী হিশ্বনের সরোবরের মতই সুন্দর| তোমার নাক লিবানোনের সেই স্তম্ভের মত য়ে স্তম্ভ দম্মেশকের দিকে চেয়ে থাকে| 5 তোমার মাথা কর্ম্মিল পর্বতের মত| তোমার মাথার চুল রেশমের মত| তোমার দীর্ঘ দোলাযিত চুল রাজাকে পর্য়ন্ত আকৃষ্ট করে! 6 তুমি সত্যিই সুন্দরী! তুমি সত্যিই মনোরমা! প্রিযা আমার, সত্যিই তুমি এক জন সব চেয়ে মনোরমা যুবতী! 7 তুমি তালগাছের মত দীর্ঘ এবং তোমার স্তন দুটি সেই গাছের থোকা থোকা ফলের মত| 8 আমি সেই গাছে চড়তে চাই, এবং আমি তার ডাল ধরতে চাই| তোমার বক্ষযুগল দ্রাক্ষার থোকার মত সুগন্ধিময হোক| 9 তোমার মুখের স্বাদ য়েন হয় শ্রেষ্ঠ দ্রাক্ষারসের মত| দ্রাক্ষারস ওষ্ঠাধর ও দাঁতের ওপর দিয়ে গড়িযে আমার প্রেমের ওপর ঝরে পড়ে| 10 আমি আমার প্রেমিকের এবং সে আমাকে চায়! 11 এসো প্রিয়তম আমার, আমরা মাঠে চলে যাই| এসো আমরা প্রস্ফুটিত হেনা ফুলের মাঝে আমাদের রাত কাটাই| 12 এসো আমরা তাড়াতাড়ি উঠে দ্রাক্ষা ক্ষেতে যাই| চল আমরা দেখি দ্রাক্ষার মুকুল ধরেছে কি না| চল আমরা দেখি কুঁড়ি প্রস্?ুটিত হয়েছে কি না, ডালিমের গাছে মঞ্জরী ধরেছে কি না| সেখানে তোমাকে আমি আমার প্রেম দেবো| 13 দূদাফলগন্ধ বিস্তার করছে এবং সমস্ত ফলই আমার দুযারে আছে| প্রিয়তম আমার, আমি তোমার জন্য নানা মনোরম জিনিস সংগ্রহ করে রেখেছি| নতুন এবং পুরাতন নানা জিনিস!
1 যদি তুমি আমার ভাইয়ের মত হতে, য়ে আমার মায়ের স্তন্য পান করেছে, তাহলে আমি যদি তোমাকে বাইরে দেখতে পেতাম, আমি তোমাকে চুম্বন করতাম এবং তখন কেউই কিন্তু আমাকে ঘৃণা করত না| 2 আমি তোমাকে আমার মায়ের বাড়ীতে, তাঁর সেই ঘরে নিয়ে য়েতাম যিনি আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন| আমি তোমাকে ডালিম নিষিক্ত সুগন্ধি দ্রাক্ষারস পান করতে দিতাম| 3 তার বাঁ হাত আমার মাথার নীচে এবং তার ডান হাত আমায় জড়িয়ে ধরে| 4 হে জেরুশালেমের কন্যাগণ, প্রতিজ্ঞা কর, যতক্ষণ না প্রস্তুত হই, ভালোবাসাকে জাগিও না| 5 প্রিয়তমকে ভর করে মরুভূমির মধ্য দিয়ে ওই মেযেটি কে আসছে?যেখানে তোমার মা তোমায় জন্ম দিয়েছে, যেখানে তুমি জন্মেছিলে সেই আপেল গাছের নীচে আমি তোমায় জাগিয়ে ছিলাম| 6 শীলমোহরের মত আমাকে তোমার হৃদয়ের ওপরে রেখো| শীলমোহরের মত বাহুর ওপরে রেখো| ভালোবাসা মৃত্যুর মতই শক্তিশালী| কামনার আবেগ কবরের মতই বলবান| এর শিখাগুলি জ্বলন্ত আগুনের শিখার মত! 7 বন্যা কখনও ভালোবাসাকে নির্বাসিত করতে পারে না| নদী কখনও ভালোবাসাকে ধুয়ে দিতে পারে না| ভালোবাসার জন্য মানুষকে যদি তার সর্বস্ব ত্যাগ করতে হয়, তারা অবশ্যই তা ঘৃণা করবে! 8 আমাদের একটি ছোট ভগিনী আছে| এখনও তার স্তন উদ্ভিন্ন হয় নি| যদি কোন ব্যক্তি তাকে বিবাহ করতে চায় তখন আমাদের ভগিনীর জন্য আমরা কি করবো? 9 যদি সে একটা দেওয়াল হত, আমরা তার চারদিকে রূপোর মিনার গড়ে দিতাম| যদি সে দরজা হত, তার চার দিকে এরস কাঠের কারুকার্য়্য় করে দিতাম| 10 আমি একটি প্রাচীর, আমার স্তনদ্বয় মিনারের মত| আমি তার চোখে অনুগ্রহ দেখেছি! 11 বাল্-হামোনে শলোমনের একটি দ্রাক্ষা বাগান ছিল| সেই দ্রাক্ষা বাগানে সে রক্ষীদের নিয়োগ করল| এবং প্রত্যেকে 1,000 রৌপ্য শেকল পরিমাণ দ্রাক্ষা নিয়ে এল| 12 শলোমন তুমি তোমার 1,000 শেকল রাখতে পারো| প্রত্যেকে যারা দ্রাক্ষা এনেছে তাদের 200 শেকল করে দাও| কিন্তু আমি আমার নিজের দ্রাক্ষা ক্ষেত নিজের কাছে রাখবো! 13 বাগানের ঐখানে তুমি বস, অনুগামীরা তোমার কথা শুনছে| আমাকেও তা শুনতে দাও! 14 প্রিয় আমার, পালিয়ে যাও| সুগন্ধি মসলার পর্বতে তুমি হরিণের মত কিংবা মৃগবত্সের মত হয়ে গেছ!
1 এটা আমোসের পুত্র যিশাইয়ের দর্শন| যিহূদা এবং জেরুশালেমে কি ঘটবে ঈশ্বর যিশাইয়কে তা দেখিয়েছিলেন| ঊষিয,য়োথম,আহসও হিষ্কিয়যখন যিহূদার রাজা ছিলেন তখন যিশাইয়র এই সব দর্শন হয়েছিল| 2 হে স্বর্গ ও মর্ত্য শোন! প্রভু কথা বলছেন| প্রভু বলেন,“আমি আমার সন্তানদের জন্ম দিয়েছি| তাদের লালনপালন করেছি| কিন্তু আমার সন্তানরাই আমার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে| 3 একটা গরুও তার মনিবকে চেনে| একটা গাধাও জানে তার মালিক তাকে কোথায় খাওয়ায়| কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা আমাকে চেনে না| আমার লোকরা আমাকে বোঝে না|” 4 ওহে পাপিষ্ঠ জাতি, অপরাধে ভারগ্রস্ত লোকরা! তারা দুষ্ট পরিবারের মন্দ সন্তানদের মতো| তারা তাদের প্রভুকে ত্যাগ করেছে| তারা ইস্রায়েলের পবিত্র জনটিকে বাতিল করেছে| তারা তাঁর থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে| 5 ঈশ্বর বলেন, “কেন আমি তোমাদের শাস্তি দিতে যাব? আমি তোমাদের শাস্তি দিয়েছি কিন্তু তোমাদের পরিবর্তন হয় নি| তোমরা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেই চলেছ| এখন তোমাদের প্রত্যেকের মন-প্রাণ অসুস্থ| 6 তোমাদের আপাদমস্তক সারা শরীরময় শুধুই ক্ষত, দগ্দগে ঘা আর আঘাতের চিহ্ন| সেই ক্ষত সারাতে কোনও যত্ন নেওয়া হয় নি| ক্ষতগুলি না পটি দিয়ে বাঁধা হয়েছিল, না তেল দিয়ে কোমল করা হয়েছিল| 7 “তোমাদের দেশ ধ্বংস হয়েছে| তোমাদের শহরগুলি অগ্নিদগ্ধ| তোমাদের শএুরা তোমাদের দেশ দখল করে নিয়েছে| কোন দেশ বিদেশী আক্রমণকারীর সেনাবাহিনীর দ্বারা যে ভাবে ধ্বংস হয় তোমাদের দেশ সে ভাবেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে| 8 যেমন দ্রাক্ষাক্ষেতের একটি কুটিরকে, যেমন একটি শশাক্ষেতের চালাকে, যেমন একটি শহরকে শএু দ্বারা অবরুদ্ধ রাখা হয় তেমনি ভাবে সিয়োন (জেরুশালেম) কন্যাকে ফেলে রাখা হয়েছে|” 9 এটা সত্যি, কিন্তু প্রভু সর্বশক্তিমান গুটিকতক লোককে জীবনযাপনের অনুমতি দিয়েছেন| আমরা সদোম এবং ঘমোরা এই নগর দুটির মত পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাই নি| 10 সদোমের শাসনকর্তারা, তোমরা প্রভুর বার্তা শোন| ঘমোরার অধিবাসীগণ, তোমরা ঈশ্বরের শিক্ষামালা শোন| 11 ঈশ্বর বলেছেন, “তোমরা কেন আমার উদ্দেশ্যে এত বলিদান করে চলেছ? তোমাদের পাঁঠার বলিতে এবং ষাঁড়, মেষ এবং ছাগলের মেদে আমার অরুচি ধরে গিয়েছে| আমি সন্তুষ্ট নই| 12 “লোকরা, তোমরা যখন আমার কাছে প্রার্থনা করতে আস তখন তোমরা আমার উপাসনালয় প্রাঙ্গণের সবকিছুকে পদদলিত কর| তোমাদের এসব কে করতে বলল? 13 “এই অসার নৈবেদ্য আমি চাই না| আমার উদ্দেশ্যে নিবেদিত ধুপধূনোর প্রজ্জ্বলনকে আমি ঘৃণা করি| অমাবস্যার দিনে, বিশ্রামের দিনে তোমাদের বিশেষ ভোজ বা প্রার্থনা সভাকে আমি সহ্য করতে পারি না| তোমাদের পবিত্র সমাবেশের দিনে পাপাচারকে আমি মনেপ্রাণে ঘৃণা করি| 14 আমি তোমাদের মাসিক (অমাবস্যা) অনুষ্ঠানাদি ও উত্সবকে ঘৃণা করি| ওগুলো আমার কাছে ভারী বিরক্তিকর| আমি ওগুলো আর সহ্য করতে পারি না| 15 “তোমরা হাত তুলে আমার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা জানালে আমি তোমাদের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নেব| তোমরা বারে বারে প্রার্থনা করবে কিন্তু আমি তা শুনব না| কেন না তোমাদের হাত রক্তমাখা| 16 “তোমরা নিজেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কর, শুদ্ধ কর এবং মন্দ কাজগুলি করা বন্ধ কর| আমি তোমাদের মন্দ কাজগুলি দেখতে চাই না| 17 ভালো কাজ করতে শেখো| মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার কর, ন্যায়বিচারের অনুশীলন কর, অত্যাচারী, অনিষ্টকারী লোকদের শাস্তি বিধান কর, অনাথ ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়াও, বিধ্বাদের সাহায্য কর|” 18 প্রভু বলেন, “এস, এইসব বিষয়গুলি নিয়ে বিচার বিবেচনা, আলাপ আলোচনা করা যাক| যদিও তোমাদের পাপগুলো উজ্জ্বল লাল রঙের কাপড়ের মত, ওগুলো ধুয়ে ফেলা যায় এবং তোমরা তুষারের মতো সাদা হয়ে যেতে পারো| যদিও তোমাদের পাপ রক্তের মত লাল, তোমরা পশমের মতো শুভ্র হয়ে উঠতে পারো| 19 “আমাকে মেনে চললে, আমার কথা শুনলে তোমরা এই দেশ থেকে অনেক ভালো ভালো জিনিস পাবে| 20 কিন্তু আমার কথা না শুনলে তোমরা আমার বিরুদ্ধাচারী হবে এবং তোমাদের শএুরা তোমাদের ধ্বংস করবে|”প্রভু বয়ং ঐ কথাগুলি বলেছেন| 21 ঈশ্বর বলেন, “জেরুশালেমের দিকে তাকাও| এই শহর এক সময় আমার কথামত চলত, আমাকে অনুসরণ ও বিশ্বাস করত| কিন্তু এই বিশ্বস্ত এবং অনুগত শহরের পতিতার মত অবস্থা হওয়ার কারণ কি? এর একটাই কারণ হল এখানকার অধিবাসীরা এখন আর আমাকে মেনে চলে না| জেরুশালেমের ধার্মিকতায পরিপূর্ণ থাকা উচিত্| এখানকার লোকদের ঈশ্বরের আকাঙ্খিত পথেই চলা উচিত্| কিন্তু এখন এখানে খুনীরা থাকে| 22 “ধর্ম, সাধুতা, মহানুভবতা এই গুণগুলি রূপোর মতো| কিন্তু তোমাদের রূপো মূল্যহীন হয়ে পড়েছে| তোমাদের দ্রাক্ষারসে (মহানুভবতায) জল মিশে গিয়ে তা দুর্বল হয়ে পড়েছে| 23 তোমাদের শাসনকর্তারা বিদ্রোহী এবং চোরদের বন্ধু হয়ে উঠেছে| তারা ঘুষ নেয, নোংরা কাজের জন্য টাকা নিতে ভালোবাসে| লোককে প্রতারিত করার জন্য তারা উত্কোচ নেয| তারা অনাথ ছেলেমেয়েদের সাহায্য করে না, বিধ্বাদের অভাব অভিয়োগে কান দেয় না| তাদের দেখাশোনা করে না|” 24 এই জন্য আমার গুরু, ইস্রায়েলের প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “আমি আমার শএুদের শাস্তি দেব| তারা আর আমাকে বিরক্ত করবে না| 25 রূপোতে যেমন ক্ষার দিয়ে তার খাদ পরিষ্কার করা হয় তেমনি আমিও তোমাদের সব কুকর্ম, পাপ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দেব| তোমাদের কাছ থেকে সব অসার জিনিস আমি দূর করব| 26 তোমাদের জন্য আগের মতোই ন্যায় বিচারকগণ এবং উপদেষ্টাগণ নিয়োগ করা হবে| তখন তোমাদের শহরকে ‘ন্যাযের শহর’, ‘বিশ্বস্ত নগরী’ নামে ডাকা হবে|” 27 ঈশ্বর মহান এবং তিনি সঠিক কাজই করেন| সুতরাং তিনি সিয়োন এবং তার যেসব লোকরা তাঁর কাছে ফিরে আসবে তাদের তিনি উদ্ধার করবেন| 28 কিন্তু সমস্ত পাপী এবং দুষ্কৃতকারীদের ধ্বংস করা হবে| এরা প্রভুকে মেনে চলে না| 29 তোমরা যে এলাবৃক্ষ এবং বিশেষ বাগানকে দেবতাজ্ঞানে পূজো করতে, ভবিষ্যতে তার জন্য নিজেরাই লজ্জিত হবে| 30 কারণ ভবিষ্যতে তোমাদের অবস্থা এলা বৃক্ষের শুষ্ক পাতার মতো নির্জ্জলা, মৃতপ্রায বাগানের মতো হবে| 31 ক্ষমতাবান লোকদের অবস্থা শুকনো কাঠের টুকরোর মতো হবে এবং তাদের কৃতকর্ম আগুনের ফুলকির মতো হবে| উভয়েই এক সঙ্গে জ্বলতে থাকবে আর সেই আগুন কেউ নেভাতে পারবে না|
1 আমোসের পুত্র যিশাইয় যিহূদা ও জেরুশালেম সম্পর্কে এইসব বার্তার দর্শন পান| 2 শেষের দিনগুলিতে, প্রভুর মন্দিরের পর্বতকে সকল পর্বতের মধ্যে শীর্ষস্থানীয করা হবে এবং ওটিকে সমস্ত পর্বত থেকে উচ্চতর করা হবে| এবং সমস্ত দেশগুলি থেকে লোকরা সেখানে নিয়মিত ভাবে প্রবাহের মত যাবে| 3 বহু দেশের লোক সেখানে যাবে| তারা বলবে, “চল, আমরা সবাই প্রভুর পর্বতে, যাকোবের ঈশ্বরের উপাসনাগৃহে উঠি| তারপর তিনি আমাদের তাঁর জীবনযাপনের পথ শেখাবেন এবং আমরা জীবনের সেই পথ অনুসরণ করব|”ঈশ্বরের বিধি, প্রভুর বার্তাসমূহ জেরুশালেমের সিয়োন পর্বত থেকে শুরু হবে এবং গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে| 4 তারপর ঈশ্বর সকল জাতির বিচারক হবেন| এবং অনেক লোকের বাদানুবাদের নিষ্পত্তি করবেন| তারা নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের সময় অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করবে| তারা তাদের তরবারি থেকে লাঙলের ফলা তৈরি করবে এবং বর্শার ফলা দিয়ে কাটারি বানাবে| এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে তরবারি ধরবে না| পরস্পরের মধ্যে লড়াই বন্ধ হবে| তারা কখনও যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেবে না| 5 যাকোবের পরিবার, এসো আমরা প্রভুর আলোকিত পথে চলি! 6 আমি তোমাকে একথা বলছি কারণ তুমি তোমার লোকদের ত্যাগ করেছ| তোমার লোকরা পূর্বদিকের লোকদের ধ্যান ধারণায পরিপূর্ণ হয়েছে| তোমার লোকরা পলেষ্টীয়দের মতো ভবিষ্যত্ বক্তা হবার চেষ্টা করছে| তোমাদের লোকরা বহিরাগতদের সঙ্গে খুব বেশী জড়িয়ে পড়েছে| 7 তোমাদের দেশ অন্য দেশের সোনা, রূপোয পরিপূর্ণ| সেখানে ধনসম্পত্তির সীমা পরিসীমা নেই| তোমাদের দেশ ঘোড়া এবং অসংখ্য রথে পরিপূর্ণ| 8 তোমাদের দেশ মূর্ত্তিতে পরিপূর্ণ| নিজেদের হাতে গড়া মূর্ত্তিগুলির সামনে লোকেরা নতজানু হয়ে তাদের পূজো করে| 9 লোকরা খুব নীচ এবং হীন হয়ে গেছে| তাই ঈশ্বর, আপনি তাদের নিশ্চই ক্ষমা করবেন না| 10 যাও, পাথরের পেছনে আবর্জনার মধ্যে লুকিয়ে থাকো| প্রভুকে তোমাদের ভয় পাওয়া উচিত্ এবং তাঁর মহান পরাক্রম থেকে তোমাদের লুকিয়ে থাকা উচিত্| 11 দাম্ভিক লোকরা অহঙ্কার করবে না| এই সব লোকরা লজ্জায মাটিতে মাথা নত করবে| সেই সময় শুধুমাত্র প্রভু একা উন্নত মস্তকে বিরাজ করবেন| 12 প্রভুর একটি বিশেষ দিনের পরিকল্পনা আছে| সেই দিনে প্রভু উদ্ধত ও অহঙ্কারী লোকদের শাস্তি দেবেন| সেই দিনে ঐসব লোকরা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে না| 13 ঐসব অহঙ্কারী লোকরা লিবানোনের উচ্চ ও উন্নত এরস বৃক্ষের মতো| তারা বাশনের বৃহত্ এলা বৃক্ষের মতো| কিন্তু ঈশ্বর এই সব লোকদের শাস্তি দেবেন| 14 এই সব অহঙ্কারী লোকরা দীর্ঘ পর্বতমালা ও উচ্চ পাহাড়ের মতো| 15 এই সব লোকরা লম্বা দুর্গ, উচ্চ শক্তিশালী প্রাচীরের মতো| কিন্তু ঈশ্বর এই সব লোকদের শাস্তি দেবেন| 16 এই সব লোকরা তর্শীশের বড় জাহাজের মতো| (জাহাজগুলি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসে পরিপূর্ণ|) কিন্তু ঈশ্বর এই সব অহঙ্কারী লোকদের শাস্তি দেবেন| 17 সেই সময় লোকরা অহঙ্কারী হওয়া বন্ধ করবে| অহঙ্কারী লোকরা মাটিতে মাথা নত করবে| সেই সময় শুধুমাত্র প্রভু উন্নত মস্তকে বিরাজ করবেন| 18 সমস্ত মূর্ত্তিগুলি সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যাবে| 19 লোকরা পাথর এবং মাটির ফাটলে লুকোবে| লোকে প্রভু এবং তাঁর মহান পরাক্রমকে ভয় পাবে| পৃথিবীকে কম্পিত করার জন্য যখন প্রভু উঠে দাঁড়াবেন তখনই এই সব ঘটবে| 20 সেই সময় লোকরা তাদের স্বর্ণ ও রৌপ্যমূর্ত্তি-গুলিকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে| (লোকরা এই সব মূর্ত্তিগুলিকে পূজো করার জন্য তৈরী করেছিল|) এই সব মূর্ত্তিগুলিকে লোকরা বাদুড় ও ছুঁচোর গর্তে নিক্ষেপ করবে| 21 তারপর লোকরা প্রভু এবং তাঁর মহান পরাক্রমে ভীত হয়ে পাথরগুলোর ফাটলে লুকোবে| এই সব ঘটবে যখন প্রভু পৃথিবীকে কম্পিত করবেন| 22 নিজেদের রক্ষা করার জন্য লোকদের অন্য কারও ওপর আস্থা রাখা উচিত্ নয়| কারণ মানুষ মরণশীল এবং তারা মারা যাবে| তাই তোমাদের এটা ভাবা উচিত্ নয় যে তারা ঈশ্বরের মতো ক্ষমতাবান|
1 আমি যা বলছি তা অনুধাবন কর| যিহূদা এবং জেরুশালেম যে সমস্ত জিনিসের ওপর নির্ভরশীল, গুরু, প্রভু সর্বশক্তিমান সে সব জিনিসগুলির অবলুপ্তি ঘটাবেন| ঈশ্বর সমস্ত জল ও খাবার সরিয়ে নেবেন| 2 ঈশ্বর সকল বীর ও মহান যোদ্ধা, সকল বিচারক, ভাব্বাদী, 3 যাদুকরগণ, প্রবীণগণ, সামরিক নেতাসমূহ, সরকারি প্রধানগণ, দক্ষ উপদেষ্টাগণ, দক্ষ কারিগর এবং যারা তাবিজ ব্যবহার করতে জানে তাদের সবাইকে সরিয়ে দেবেন| 4 ঈশ্বর বলেন, “আমি বালকগণকে তোমাদের নেতা করব| 5 প্রত্যেক লোক একে অপরের বিরুদ্ধাচরণ করবে| ছোটরা বড়দের শ্রদ্ধা করবে না| গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সাধারণ লোকদের কাছ থেকে সম্মান পাবে না|” 6 সেই সময় কেউ এক জন তারই পরিবারভুক্ত ভাইযের হাত ধরে বলবে, “তোমার কোটবস্ত্র আছে, তাই তুমি আমাদের নেতা হবে| এই সব বিনাশ তোমার আযত্ত্বে থাকবে|” 7 কিন্তু সে চিত্কার করে বলবে, “আমি তোমাদের নেতা হব না| কারণ আমার বাড়িতে যথেষ্ট অন্ন-বস্ত্র নেই| তুমি আমাকে দিয়ে লোকদের নেতৃত্ব দেওয়াবে না|” 8 এই সবই ঘটবে কারণ জেরুশালেম হোঁচট খেয়েছে এবং যিহূদার পতন হয়েছে| তাদের কাজকর্ম ও কথাবার্তা সবই প্রভুর বিরুদ্ধে যদিও তিনি সবই দেখেন| 9 লোকদের মুখই বলে দিচ্ছে যে তারা পাপ কাজের দোষে দুষ্ট| এবং তারা তাদের পাপের জন্য গর্বিত| তারা সদোমের লোকদের মতোই| কে তাদের পাপ দেখছে সেই ব্যাপারে তাদের কোন ভ্রূক্ষেপ নেই| এটা তাদের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক হবে| তারা নিজেদের ভযানক বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছে| 10 ভালো লোকদের বলে দাও যে তাদের জন্য ভালো কিছু ঘটবে| ভালো কাজের পুরস্কার তারা পাবে| 11 কিন্তু শযতান লোকদের জন্য কঠিন সময় আসছে| তাদের ভীষণ কষ্ট ও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে| সমস্ত কুকর্মের শাস্তি তাদের পেতেই হবে| 12 বালকরা আমার লোকদের হারিযে দেবে| মেয়েরা তাদের শাসন করবে| তাদের ওপর কর্তৃত্ব করবে| আমার লোকরা, তোমাদের পথ প্রদর্শকরাই তোমাদের ভুল পথে চালিত করছে| তারা তোমাদের সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করছে| 13 প্রভু লোকদের বিচার করবার জন্য উত্থান করবেন| 14 নেতা এবং প্রাচীনদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর মতামত দেবেন|প্রভু বলেন, “হে আমার লোকরা, তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত (যিহূদা) পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছ| তোমরা গরীব মানুষদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কেড়ে নিয়েছ| এবং সেই সব জিনিসপত্র এখনও তোমাদের বাড়িতেই আছে| 15 আমার লোকদের আঘাত করার অধিকার কে তোমাদের দিয়েছে? গরীব, হতদরিদ্র মানুষদের নোংরা-আবর্জনার মধ্যে ঠেলে দেওয়ার অধিকার কে তোমাদের দিয়েছে?” আমার গুরু, প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন| 16 প্রভু আরও বললেন, “সিয়োনের মেয়েরা খুবই অহঙ্কারী হয়ে উঠেছে| তারা মাথা হেলিযে দুলিযে য়ত্রতত্র এমন ভাবে ঘুরে বেড়ায যেন তারা অন্য লোকদের চেয়ে যথেষ্ট ভাল| এই সব মেয়েরা হাসি-মস্করা, ছেনালিগিরি করে ঘুরে বেড়ায| এবং তারা পায়ে নূপুরের রুনুঝুনু শব্দ করে, নেচে নেচে দিকবিদিক ঘুরে বেড়ায|” 17 আমার গুরু সিয়োনের এই ধরণের মেয়েদের মাথায় দগদগে ক্ষতের সৃষ্টি করবেন| ফলে তাদের মাথায় টাক পড়বে| 18 সেই সময় তিনি তাদের গর্বের সমস্ত সম্পদ নিয়ে নেবেন| তাদের পায়ের নূপুর, তাদের সূর্য় ও চাঁদের আকারের গলার হার, 19 ঝুমকো পাশা, চুড়ি, ঘোমটা, ললাটভূষণ, পায়ের মল, 20 ঘাঘরা, শাল, মসীনা বস্ত্র, 21 বিশেষ আংটি, নথ, 22 চিত্রবস্ত্র, গেঁজে, 23 আযনা, মসীনা বস্ত্র, উষ্ণীষ, লম্বা শালের মতো আবরক বস্ত্ররূপ বেশভূষা খুলে নেবেন| 24 এবং সুগন্ধির পরিবর্তে তাদের কাছে থাকবে দুর্গন্ধ তেল, কোমরবন্ধনীর বদলে থাকবে একটি ছেঁড়া পোশাক, সুবিন্যস্ত কেশ পরিচর্য়্য়ার বদলে থাকবে মাথাজোড়া টাক, কেতাদুরস্ত কোমরবন্ধনীর পরিবর্তে থাকবে চটের তৈরী কোরমবন্ধনী কারণ সুন্দরী হওয়ার পরিবর্তে তারা হবে কুত্সিত দর্শন| 25 সেই সময় তোমাদের পুরুষদের তরবারি দিয়ে হত্যা করা হবে| তোমাদের বীর যোদ্ধারা যুদ্ধে মারা যাবে| 26এবং তার নগর দ্বারগুলি কষ্ট পাবে এবং বিলাপ করবে এবং সে বিপর্য়স্ত হয়ে মাটিতে বসে থাকবে| 26
1 সেই সময় সাত জন মহিলা এক জন পুরুষের হাত চেপে ধরে বলবে, “আমরা আমাদের রুটি-রুজি, বস্ত্র, বাসস্থান নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা নিজেরাই করব| তুমি শুধু আমাদের বিয়ে কর| তোমার নামে আমাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠা দাও| আমাদের অব্বিাহিত থাকার যন্ত্রণা, লজ্জা, অপমান দূর কর|” 2 সেই সময়, প্রভুর গাছ (যিহূদা) বড় হবে এবং সুন্দর হয়ে উঠবে| এমনকি তখনও ইস্রায়েলের উদ্বাস্ুরা তাদের দেশে উত্পন্ন শস্য নিয়ে গর্ব অনুভব করবে| 3 এই সময় সিয়োন এবং জেরুশালেমে তখনও বসবাস করা লোকদের পবিত্র মানুষ বলে গণ্য করা হবে| যাদের নাম বিশেষ তালিকায থাকবে তারাই ভাগ্যবান, পবিত্র মানুষ বলে বিবেচিত হবে| এবং এই তালিকাভুক্ত লোকদেরই বাস করে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে| 4 প্রভু সিয়োনের মহিলাদের থেকে নোংরা ধুয়ে মুছে ফেলবেন| তিনি জেরুশালেম থেকে রক্ত ধুয়ে ফেলবেন| প্রভু ন্যাযের নীতিটি ব্যবহার করবেন এবং ন্যায় বিচার করবেন| তিনি প্রজ্জ্বলিত করবার নীতিটি ব্যবহার করে প্রতিটি জিনিষকে শুদ্ধ করে তুলবেন| 5 তারপর প্রভু সিয়োন পর্বতের ভিত্তির ওপর আকাশে এবং তার সমাবেশ স্থানগুলিতে দিনে একটি ধোঁযার মেঘ ও রাত্রেও একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা সৃষ্টি করবেন| সেখানে প্রতিটি সমাবেশের ওপর রক্ষার জন্য একটি আচ্ছাদন থাকবে| 6 সমস্ত মানুষের জন্য এমন এক নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করা হবে যেখানে সূর্য়ের প্রখর তাপ তাদের স্পর্শ করতে পারবে না| সব ধরণের ঝড় ঝঞ্ঝা এবং প্লাবন থেকে তারা রক্ষা পাবে|
1 এখন আমি আমার ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গান করব| দ্রাক্ষা ক্ষেতের (ইস্রায়েলের) প্রতি ঈশ্বরের যে ভালোবাসা আছে এই গান সে সম্পর্কেই|আমার ঈশ্বরের একটি দ্রাক্ষা ক্ষেত ছিল অতি উর্বর মাটিতে| 2 তিনি তার চারদিক খুঁড়ে মাঠটিকে ভালো ভাবে পরিষ্কার করলেন| তারপর সেখানে ভালো জাতের দ্রাক্ষা গাছ লাগালেন| তিনি মাঠের মাঝখানে দেখাশোনার জন্য একটি উঁচু বাড়ি তৈরি করলেন| সেখানে তিনি ভাল দ্রাক্ষা ফলবার আশায় বসে রইলেন| কিন্তু জন্মালো বুনো দ্রাক্ষা| 3 তাই ঈশ্বর বললেন, “যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকরা, তোমরা আমার এবং আমার দ্রাক্ষাক্ষেতের কথা চিন্তা কর| 4 আমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতের জন্য সাধ্যমত সবকিছুই করেছি| আমি তার জন্য আর কিই বা করতে পারতাম? আমি ভালো দ্রাক্ষার আশা করেছিলাম| কিন্তু শুধু বাজে দ্রাক্ষা ফলেছিল| কেন এমনটা ঘটল? 5 আমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতের জন্য কি কি করব এখন আমি তোমাদের সে কথাই শোনাব|দ্রাক্ষা ক্ষেতের সুরক্ষার জন্য চারদিকে যে কাঁটার ঝোপগুলি আছে তা আমি তুলে ফেলে পুড়িয়ে দেব| আমি পাথরের প্রাচীর ভেঙে ফেলব এবং পাথরগুলি ক্ষেতের ওপর ফেলে দেওয়া হবে| 6 আমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতকে খোলা মাঠে পরিণত করব| ঐ ক্ষেতের গাছগুলির কেউ যত্ন নেবে না| কেউ পরিচর্য়া করবে না| সেখানে আগাছা আর কাঁটা জন্মাবে| আমি মেঘকে হুকুম দেব যাতে ক্ষেতে একফোঁটা বৃষ্টি বর্ষিত না হয়|” 7 ইস্রায়েল জাতি হল প্রভু সর্বশক্তিমানের এই দ্রাক্ষা ক্ষেত| আর যিহূদার লোকরা হল তাঁর এক কালের আদরের দ্রাক্ষার চারা|প্রভু আশা করেছিলেন ন্যায়, কিন্তু সেখানে ছিল শুধুই হত্যাকাণ্ড| প্রভু আশা করছিলেন সুন্দর জীবন, কিন্তু সেখানে শোনা যাচ্ছে অত্যাচারীদের এন্দন রোল| 8 তোমরা পাশাপাশি বাস করছ| ঘেঁসাঘেঁসি করে বাড়ি বানিয়েছ| তোমরা ক্ষেতের সঙ্গে ক্ষেতের সংযোগ এমন ভাবে করেছ যে আর এতটুকু জায়গা অবশিষ্ট নেই| কিন্তু প্রভু তোমাদের এমন শাস্তি দেবেন যে তোমাদের একাকী থাকতে হবে| সমস্ত ভূখণ্ডটিতে শুধু তোমরাই বাস করবে| 9 প্রভু সর্বশক্তিমান আমাকে এই কথাগুলি বললেন এবং আমি তাঁর কথা শুনলাম: “এখানে অনেক বাড়ি আছে, কিন্তু আমি অঙ্গীকার করছি যে, সমস্ত ঘর-বাড়ি ধ্বংস করা হবে| এখানে এখন অনেক সুন্দর মনোরম বাড়ি আছে| কিন্তু এই সব বাড়িগুলি খালি হয়ে যাবে| 10 সেই সময় দশ একর মাঠে যে দ্রাক্ষা হবে তা থেকে খুব সামান্য দ্রাক্ষারস তৈরি করা যাবে| বহু বস্তা বীজ থেকে খুবই অল্প শস্য উত্পন্ন হবে|” 11 তোমরা সকালে উঠেই পানীয় হিসাবে দ্রাক্ষারসের খোঁজ কর| তোমরা দ্রাক্ষারস পান করার জন্য গভীর রাত পর্য়ন্ত জেগে থাক| 12 তোমরা দ্রাক্ষারস, বাঁশি, ঢোলক এবং বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে ফূর্তি-আমোদ কর| কিন্তু তোমরা প্রভুর কর্মকাণ্ড দেখতে পাও না| প্রভু নিজ হাতে অনেক জিনিস তৈরি করেছেন| কিন্তু তোমরা ঐসব জিনিস দেখতে পাও না| 13 প্রভু বললেন, “আমার লোকদের বন্দী করে অন্যত্র নির্বাসনে দেওয়া হবে| কিন্তু কেন? কারণ তারা আমাকে প্রকৃতপক্ষে জানে না| ইস্রায়েলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন| তাঁরা তাঁদের অনায়াস জীবনযাপন নিয়ে সন্তুষ্ট| কিন্তু তারা খুবই তৃষ্ণার্ত এবং ক্ষুধার্ত হবে| 14 তারপর তারা মারা যাবে| এবং পাতাল মৃতদেহে ভরে যাবে| পাতালের সীমাহীন খিদে ও চাহিদা মেটাতে নামী, সাধারণ সব মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হবে এবং এই সব মানুষ কবরে যাবে|” 15 ঐসব লোকদের অবদমিত করা হবে| প্রত্যেককে বিনম্র করা হবে এবং তাদের গর্ব কমিযে আনা হবে| 16 প্রভু সর্বশক্তিমান, ন্যায়বিচার করবেন এবং লোকরা জানবে যে তিনি মহান| পবিত্রতম ঈশ্বর যেগুলি সঠিক ও ন্যায্য সেই সব কাজই করবেন এবং লোকরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবে| 17 ঈশ্বর ইস্রায়েলের অধিবাসীদের দেশছাড়া করবেন| দেশ খালি হয়ে যাবে| মেষরা ইচ্ছামতো যেখানে খুশী ঘুরে বেড়াতে পারবে| একদা ধনী লোকের মালিকানাধীন জমি-জায়গাতে মেষ চরে বেড়াবে| 18 ঐ লোকগুলিকে দেখ! অপ্রয়োজনীয় দড়ি নিয়ে লোকরা যেমন ওযাগন টানে তেমনি এই ধরণের লোকরা নিজেদের পাপ, কুকর্ম এবং দোষকে পেছনে টেনে নিয়ে বেড়ায| 19 এই লোকরা বলে, “আমাদের কামনা, ঈশ্বর যা যা করার পরিকল্পনা করেছেন তা তাড়াতাড়ি করবেন| তারপর আমরা জানব কি ঘটবে| আমাদের আশা প্রভুর পরিকল্পনা খুব তাড়াতাড়ি বাস্তবায়িত হবে| তারপরই আমরা জানতে পারব তাঁর পরিকল্পনা কি|” 20 এই ধরণের লোকরা ভালো জিনিসকে খারাপ বলে আর খারাপ জিনিসকে ভালো বলে মনে করে| এরা আলোকে অন্ধকার আর অন্ধকারকে আলো বলে মনে করে| এরা টককে মিষ্টি এবং মিষ্টিকে টক ভাবে| 21 ঐসব লোকরা নিজেদের খুব জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান মনে করে| 22 এই ধরণের লোকরা দ্রাক্ষারস পান করার জন্য বিখ্যাত| এরা দ্রাক্ষারসের মিশ্রণ তৈরীতে একেবারে সিদ্ধহস্ত| 23 তারা ঘুষ নিয়ে অপরাধীদের নিরাপরাধ বলে ঘোষনা করে| কিন্তু তারা ভালো লোককে ন্যায্য বিচার পেতে দেবে না| 24 এই সব লোকের কপালে খুবই দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে| খড়কুটো এবং গাছের পাতাকে আগুন যেমন অনায়াসে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় তেমনি এদের উত্তরপুরুষদেরও পুরোপুরি ধ্বংস করা হবে| মৃত শিকড় যেমন গুঁড়োতে পরিণত হয়, আগুন যেমন ফুলকে পুড়িয়ে তার ছাই বাতাসে উড়িযে দেয়, এদের উত্তরপুরুষরা সে ভাবেই ধ্বংস হবে|ঐসব লোকরা প্রভু সর্বশক্তিমানের শিক্ষামালা মেনে চলেনি| তারা ইস্রায়েলের পবিত্রজনটির (ঈশ্বর) বার্তা ঘৃণা করত| 25 তাই প্রভু তাঁর লোকদের ওপর খুব রুদ্ধ হয়েছেন| প্রভু তাঁর হাত উত্তোলন করবেন এবং তাদের এমন কঠিন ভাবে শাস্তি দেবেন যে পর্বত পর্য়ন্ত ভয়ে কাঁপবে| তাদের মৃতদেহগুলি জঞ্জালের মতো রাস্তায় পড়ে থাকবে| কিন্তু তবুও ঈশ্বরের রোধ পড়বে না| তাঁর হাত তাদের শাস্তি দেবার জন্য উত্তোলিত থেকে যাবে| 26 দেখ! ঈশ্বর দূরবর্তী জাতিগণের প্রতি সঙ্কেত দিচ্ছেন| তিনি তাদের ডাকার জন্য পতাকা তুলছেন এবং শিস দিচ্ছেন| দেখ, শএুরা দূরদেশ থেকে আসছে| তারা অচিরে দেশে ঢুকে পড়বে| তারা খুব দ্রুত আসছে| 27 এই শএুরা কখনও ক্লান্ত হবে না, হোঁচট খাবে না এবং ঘুমিযে পড়বে না| তাদের অস্ত্রের কটিবন্ধন খুলে যাবে না| তাদের জুতোর ফিতে কখনই ছিঁড়ে যাবে না| 28 এই শএুদের তীর ধারালো হবে| তাদের সব ধনুকগুলি তীর ছোঁড়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে| তাদের ঘোড়ার পায়ের পাতা হবে চক্মকি পাথরের মতো শক্ত| তাদের রথের চাকায় ধূলিঝড় উঠবে| 29 শএুরা সিংহের গর্জনের মতো চিত্কার করবে| তারা সিংহ শাবকের মতো গর্জন করবে| শএুরা সরোধ গর্জন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরতদের ধরে ফেলবে| লোকরা লড়াই করে মুক্তি পেতে চেষ্টা করবে| কিন্তু তাদের রক্ষা করার কেউ থাকবে না| 30 তাই “সিংহ” গর্জন হবে সমুদ্রের ঢেউযের গর্জনের মতো| এবং বন্দী অবরুদ্ধ লোকরা মাটির দিকে তাকাবে| কিন্তু দেখবে শুধুই অন্ধকার| ঘন মেঘে সমস্ত আলো অন্ধকারে ঢেকে যাবে|
1 যে বছর ঊষিয রাজার মৃত্যু হল আমি প্রভুকে এক উচ্চ ও মনোরম সিংহাসনে বসে থাকতে দেখলাম| তাঁর লম্বা রাজপোশাক মন্দিরকে ভরে দিয়েছিল| 2 প্রভুর বিশেষ দূত সরাফরা তাঁর চারপাশে দাঁড়িয়েছিল| তাদের প্রত্যেকের ছয়টি করে ডানা ছিল| তারা দুটি ডানা দিয়ে মুখ ঢাকে, দুটি ডানা দিয়ে পা ঢাকে এবং বাকি দুটি ডানা তারা ওড়ার কাজে ব্যবহার করে| 3 এই দূতরা একে অপরকে ডেকে বলতে লাগল, “পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র| প্রভু সর্বশক্তিমান খুবই পবিত্র| তাঁর মহিমায পৃথিবী পরিপূর্ণ|” 4 তাদের চিত্কারে দরজার কাঠামো কেঁপে উঠলো| মন্দির ধোঁযায় ভরে যেতে লাগল| 5 তখন আমি হঠাত্ই ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম| আমি বললাম, “হায! আমি ধ্বংস হয়ে যাব| ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলার মতো আমি যথেষ্ট শুচি নই| এবং আমি এমন লোকদের মধ্যে বাস করি যারা ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলার মতো যথেষ্ট শুচি নয়|কারণ আমি রাজাকে, প্রভু সর্বশক্তিমানকে দেখেছি|” 6 বেদীতে আগুন জ্বলছিল| সরাফদের এক জন ইউ আকারের একটি চিমটি দিয়ে আগুন থেকে কযলা তুলছিল| এই দূতটি একটি গরম কযলার টুকরো হাতে নিয়ে আমার কাছে উড়ে এল| 7 দূতটি গরম কযলা আমার ঠোঁটে ছোঁযাল| তারপর দূতটি বলল, “যে মূহুর্তে এই গরম কযলা তোমার ঠোঁট স্পর্শ করল, তোমার সমস্ত অপরাধ মুছে গেল | তোমার সব পাপ মুছে গেল|” 8 তারপর আমি আমার প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম| তিনি বললেন, “আমি কাকে পাঠাব? আমাদের পক্ষে কে যাবে?”তখন আমি বললাম, “এই যে, আমি আছি, আমাকে পাঠান!” 9 তখন প্রভু আমাকে বললেন, “যাও এবং এই লোকদের বল: ‘তোমরা মন দিয়ে শোন কিন্তু বোঝো না! কাছ থেকে দেখ কিন্তু কোন কিছু শেখো না!’ 10 লোককে বিভ্রান্ত কর| লোকরা যে সব জিনিস দেখছে ও শুনছে তা তাদের বুঝতে দিও না| যদি তুমি এটা না কর তাহলে হয়তো তারা যে জিনিস কানে শুনবে তা সত্যি সত্যিই বুঝতে পারবে| তারা হয়তো সত্যিই তাদের মনে উপলদ্ধি করতে পারবে| যদি তারা এটা করে তাহলে লোকরা হয়তো আমার কাছে ফিরে আসতে পারে এবং তারা আরোগ্য (ক্ষমা) লাভ করবে|” 11 তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “প্রভু এটা আমি কতদিন করব?”প্রভু বললেন, “যতদিন পর্য়ন্ত সকল নগর ধ্বংস না হয় এবং লোকে চলে না যায়| যতদিন না পর্য়ন্ত একটি মানুষও তাদের বাড়ীতে পড়ে থাকে এবং গোটা দেশ ধ্বংসস্থানে পরিণত হয় তত দিন এটা কর|” 12 প্রভু লোকদের অনেক দূরে পাঠিয়ে দেবেন| দেশের একটা বিরাট অংশ খালি পড়ে থাকবে| 13 কিন্তু দশ ভাগের এক ভাগ লোককে দেশে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে| এই লোকগুলি প্রভুর কাছে ফিরে আসবে যদিও তাদের ধ্বংস হয়ে যাবার কথা| তারা একটি ওক গাছের মতো| এই গাছকে কাটার পর গুঁড়ি পড়ে থাকে| এই গুঁড়ি (অবশিষ্ট লোকরা) একটি বিশেষ বীজ| অর্থাত্ পবিত্র লোকরাই দেশে থাকবে|
1 আহস ছিলেন য়োথমের পুত্র| য়োথম ছিলেন ঊষিযের পুত্র| রত্সীন ছিলেন অরামের রাজা|আহসের রাজত্ব কালে সিরিযার রাজা রত্সীন এবং ইস্রায়েলের রাজা, রমলিযের পুত্র পেকহ জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এসেছিলেন| কিন্তু তাঁরা এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারেন নি| 2 যিহূদার রাজবাড়ি দাযূদের পরিবারকে জানানো হল যে, “অরাম এবং ইফ্রযিমের (ইস্রায়েলের) সেনাদল জোটবদ্ধ হয়েছে| তারা একসঙ্গে ঘাঁটি গেড়েছে|”এই খবর শুনে রাজা আহস এবং তাঁর প্রজারা খুব ভয় পেয়ে গেলো| বনের গাছপালা যেমন বাতাসে নড়ে তেমনি তারাও ভয়ে কাঁপতে লাগল| 3 তখন প্রভু যিশাইয়কে বললেন, “তুমি এবং তোমার পুত্র শার-যাশূব যাবে এবং আহসের সঙ্গে কথা বলবার জন্য ধোপাদের মাঠের রাস্তার পাশে যেখানে জল উচ্চতর জলাশযের মধ্যে দিয়ে বইছে, সেখানে দেখা করবে| 4 “আহসকে বল, ‘সাবধানে থেকো, কিন্তু শান্ত থেকো! রত্সীন ও রমলিযের পুত্রকে ভয় পেযো না, কারণ তারা দুটি পোড়া কাঠির মত| অতীতে তারা খুব গরম ছিল| কিন্তু এখন তারা শুধুই ধোঁযা| রত্সীন, অরাম এবং রমলিযের পুক্র রুদ্ধ হয়ে রয়েছে| 5 তারা তোমার বিরুদ্ধে নানা ফন্দি এঁটেছে| তারা বলছে: 6 আমরা যিহূদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব| আমরা নিজেদের স্বার্থে যিহূদাকে ভাগ করে টাবেলের পুত্রকে যিহূদার নতুন রাজা বানাব|”‘ 7 প্রভু আমার গুরু বললেন, “কিন্তু তাদের পরিকল্পনা সফল হবে না| 8 রত্সীন যতদিন দম্মেশকের শাসক থাকবে, ততদিন তাদের অভিসন্ধি খাটবে না| এখন ইফ্রযিম(ইস্রায়েল) একটি দেশ, কিন্তু ভবিষ্যতে আজ থেকে 65 বছর পরে সেটি আর একটি দেশ থাকবে না| 9 যতদিন শমরিয়া ইফ্রযিমের (ইস্রায়েল) রাজধানী থাকবে এবং যতদিন রমলিযের পুত্র শমরিয়ার শাসক থাকবে ততদিন তাদের ফন্দি সফল হবে না| তুমি যদি একথা বিশ্বাস না কর তাহলে লোকরা তোমাকে বিশ্বাস করবে না|” 10 তারপর প্রভু যিহূদার রাজা আহসকে আরও বললেন, 11 “প্রভু, তোমার ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি সংকেত চিহ্ন চেয়ে নাও যাতে তুমি নিজের কাছে প্রমাণ করতে পারো যে এগুলি সব সত্য| তুমি তোমার ইচ্ছেমতো যে কোন সংকেত চিহ্ন চাইতে পারো| চিহ্নটি মৃতের আলযের মতো গভীর থেকে অথবা আকাশের মত উঁচু থেকে আসতে পারে|” 12 কিন্তু আহস বললেন, “আমি প্রমাণ স্বরূপ কোন নিদর্শন চাই না| আমি প্রভুকে পরীক্ষাও করতে চাই না|” 13 যিশাইয় বললেন, “দাযূদের পুত্র, আহস মন দিয়ে শোন| লোকের ধৈর্য়্য়ের পরীক্ষা কি তোমাদের কাছে যথেষ্ট নয়? তোমরা কি আমার ঈশ্বরেরও ধৈর্য়্য়ের পরীক্ষা নিতে চাও? 14 ঈশ্বর আমার প্রভু, তোমাদের একটা চিহ্ন দেখাবেন:ঐ যুবতী মহিলাটি গর্ভবতী হবে এবং দেখ সে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেবে| তার নাম রাখা হবে ইম্মানূযেল| 15 যতদিন না পর্য়ন্ত ইম্মানূযেল খারাপ কাজ প্রত্যাখান করে ভালো কাজ বেছে নিতে শিখবে ততদিন পর্য়ন্ত সে দই ও মধু খাবে| 16 কিন্তু ছেলেটি ভালো কাজ করবার মত এবং মন্দ কাজ প্রত্যাখান করবার মতো বোঝবার বযসে এসে পৌঁছবার আগেই ইফ্রযিম এবং অরাম দেশ জনমানব বর্জিত হয়ে যাবে|“তোমরা এখন ঐ দুজন রাজার ভয়ে ভীত| 17 কিন্তু তোমাদের আসলে প্রভুকে ভয় পাওয়া উচিত্| কারণ তিনি তোমাদের জন্য দুঃসময় আনবেন| এই দুঃসময় তোমার কাছে, তোমার লোকদের কাছে এবং তোমার পিতৃকুলেও আসবে| ঈশ্বর কি করবেন? তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য তিনি অশূরের রাজাকে আমন্ত্রণ জানাবেন| 18 “সে সময় প্রভু ‘মাছি’ (এখন ‘মাছিটি’ মিশরের নদীর কাছে আছে|) এবং ‘মৌমাছিকে’ (‘মৌমাছিটি’ এখন অশূর দেশে আছে|) ডাক দেবেন| তারা তোমার দেশে এসে পৌঁছবে| 19 তারা মরুভূমির জলস্রোতের পাশে, পাথুরে গভীর খাদে, ঝোপঝাড়ে এবং জলময় গর্তের কাছে চাক বাঁধবে| 20 প্রভু যিহূদাকে শাস্তি দেবার জন্য অশূরকে ব্যবহার করবেন| প্রভু অশূরকে ভাড়া করবেন এবং সেটিকে একটি খুরের মতো ব্যবহার করা হবে| মনে হবে যেন প্রভু যিহূদার পা, মাথা এমনকি দাড়ি থেকেও চুল কামিয়ে নিচ্ছেন| 21 “এই সময় একজন লোক একটি যুবতী গাভী ও দুটি মেষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে| 22 এরা সেই লোকটিকে যে দুধ দেবে তা মাখন খাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট হবে| দেশে যারা রয়ে গেছে তারা দই এবং মধু খাবে| 23 দেশের মাঠে মাঠে যে 1,000 দ্রাক্ষা গাছ আছে তার প্রত্যেকটির মূল্য হবে 1,000 রূপোর টুকরোর সমান| কিন্তু এই দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি আগাছা এবং কাঁটায ভরে যাবে| 24 দেশ বন্য হয়ে উঠবে এবং শিকার ক্ষেত্রে পরিণত হবে| 25 যেখানে এক সময় লোকে পরিশ্রম করে খাদ্য উত্পন্ন করত, সেই পাহাড়গুলি আগাছা এবং কাঁটায ভরে যাবে এবং সেখানে আর কেউ কখনও যাবে না| শুধুমাত্র মেষ এবং ষাঁড় সেখানে অবাধে বিচরণ করতে পারবে|”
1 প্রভু আমাকে বললেন, “বড় একটি পাকানো কাগজ নিয়ে এসো এবং তাতে একটি বিশেষ কলম দিয়ে লেখ: ‘এটা মহের-শালল-হাশ-বসেরউদ্দেশ্যে|’ 2 আমি কিছু লোককে একত্রিত করলাম যাদের সাক্ষী হিসেবে বিশ্বাস করা যায়| (এরা হল ঊরিয যাজক ও য়িবেরিখিযের পুত্র সখরিয|) আমি ঐ কথা লেখার সময় এরা লক্ষ্য রাখল| 3 পরে আমি ভাব্বাদিনীর কাজে গেলাম| সে গর্ভবতী হয়ে পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| তখন প্রভু আমাকে বললেন, “ওর নাম মহের-শালল-হাশ-বস রাখ| 4 কারণ ছেলেটি ‘বাবা’, ‘মা’ বলতে শেখার আগেই ঈশ্বর দম্মেশক ও শমরিয়ার সব ধনসম্পদ নিয়ে নেবেন এবং তা অশূর রাজার হাতে তুলে দেবেন|” 5 প্রভু আবার আমাকে বললেন, 6 “এই লোকরা শীলোহের মৃদু স্রোতকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে| তারা রত্সীন ও রমলিযের পুত্র পেকহকে নিয়ে খুশী হয়েছে| 7 কিন্তু আমি, প্রভু অশূর রাজাকে আনব এবং তার সমস্ত ক্ষমতা তোমাদের বিরুদ্ধে প্রযোগ করব| তারা ফরাত্ নদীর শক্তিশালী বন্যার জলের মতো আসবে| জল ফুলে ফেঁপে যেমন নদীর দুকূল ছাপিযে তেড়ে আসে সে ভাবে তারা আসবে| 8 এই জল ঐ নদী উপচে যিহূদা দেশকে প্লাবিত করবে| এই জলে যিহূদা আকণ্ঠ নিমজ্জিত হবে এবং প্রায গোটা দেশ ভেসে যাবে|“হে ইম্মানূযেল তোমার গোটা দেশকে গ্রাস না করা পর্য়ন্ত, এই বন্যা তার তাণ্ডব চালিযে যাবে|” 9 সমস্ত দেশসমূহ, তোমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও| তোমরা পরাজিত হবে| সকল দূরবর্তী দেশের লোকরা শোন! তোমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও| তোমরাও পরাজিত হবে| 10 তোমরা যুদ্ধের পরিকল্পনা তৈরী কর! তোমাদের পরিকল্পনা পর্য়ুদস্ত হবে| তোমাদের সেনাবাহিনীকে আদেশ দাও! কিন্তু তোমাদের আদেশ নিস্?ল হবে| কেননা ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন| 11 প্রভু শক্ত হাতে আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| প্রভু আমাকে সতর্ক করে দিলেন এই লোকদের পথে না যেতে| প্রভু বললেন, 12 “প্রত্যেক লোকই বলছে যে অন্য লোক তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে| তুমি এই সব জিনিস বিশ্বাস কোরো না| এই সব লোকরা যেসব বিষয়কে ভয় পায় তুমি তাতে ভয় পেও না!” 13 এক মাত্র প্রভু সর্বশক্তিমানকেই তোমাদের ভয় পাওয়া উচিত্| তাঁকেই তোমাদের সম্মান জানানো উচিত্| 14 যদি তোমরা প্রভুকে সম্মান কর, তাঁকে পবিত্র বলে মান্য কর, তাহলেই তিনি তোমাদের পক্ষে এক নিরাপদ আশ্রয় হবেন| কিন্তু তোমরা তাঁকে সম্মান কর না| তাই ঈশ্বর একটা পাথরের মতো হবেন এবং তোমরা সেই পাথরের ওপর আছড়ে পড়বে| ইস্রায়েলের দুটি পরিবার এই পাথরের ওপর হোঁচট খাবে এবং তারা আঘাত পাবে| জেরুশালেমের সমস্ত লোককে আটক করতে প্রভু একটা ফাঁদ স্বরূপ হবেন| 15 অনেক লোক এই পাথরের ওপর হোঁচট খাবে, তারা পড়ে যাবে এবং আহত হবে| অনেকে ফাঁদে পড়ে ধরা পড়বে| 16 যিশাইয় বললেন: “একটা চুক্তি কর এবং তাতে সীলমোহর দিয়ে রাখো| ভবিষ্যতের জন্য আমার শিক্ষামালাকে সঞ্চয় করে রাখো| আমার অনুগামীদের সামনে এই কাজটি কর| 17 চুক্তিটি হল:আমি আমাদের রক্ষা করতে প্রভুর জন্য অপেক্ষা করব| তিনি যাকোবের পরিবারের থেকে মুখ লুকোচ্ছেন| কিন্তু আমি প্রভুর জন্য অপেক্ষা করব| তিনি আমাদের রক্ষা করবেন| 18 “আমি এবং আমার ছেলেমেয়েরা ইস্রায়েলের লোকের চিহ্ন এবং প্রমাণ স্বরূপ| সিয়োন পর্বতনিবাসী প্রভু সর্বশক্তিমান আমাদের পাঠিয়েছেন|” 19 এবং তারা যদি তোমাকে বলে, “মাধ্যমদের, জ্যোতিষীদের, গণত্কার এবং বাজীকরদের প্রশ্ন কর, “লোকদের কি তাদের (নিজেদের) ঈশ্বরকে খোঁজা উচিত্ নয়? মৃতদের কাছে কি তারা জীবিতদের সম্পর্কে প্রশ্ন করবে? 20 শিক্ষামালা এবং চুক্তি তোমাদের মেনে চলা উচিত্| তোমরা এই আদেশগুলো না মানলে তোমাদের হয়তো ভুল আদেশ অনুসরণ করতে হবে| গুণীন এবং গণত্কারদের কাছ থেকে যে আদেশ উপদেশ আসে সেগুলো ভুল| এর কোন মূল্য নেই| এই আদেশ মেনে চললে তোমাদের কিছু লাভ হবে না| 21 তোমরা যদি ভুল, মিথ্যা আদেশ মেনে চল তাহলে দেশে বিপদ এবং দুর্ভির্ক্ষ দেখা দেবে| ক্ষুধার্ত লোক রুদ্ধ হয়ে তাদের রাজা ও তাঁর দেবতাদের শাপ দেবে| তারপর তারা সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের খোঁজ করবে| 22 দেশের চারদিকে তাকিযে দেখলে তারা দেখতে পাবে শুধুই দুঃখ-দারিদ্র্য়, হতাশাজনক অন্ধকার| তাদের জোর করে অন্ধকারের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হবে|
1 কিন্তু যে বিপদে পড়েছিল তার জন্য কোন অন্ধকার থাকবে না| লোকরা অতীতে সবূলূন দেশ ও নপ্তালি দেশকে কোন গুরুত্বই দিত না| কিন্তু পরবর্তী-কালে সমুদ্রের নিকটবর্তী দেশ, য়র্দন নদীর অপর পারের দেশ এবং অ-ইহুদীদের মহকুমাটিকে ঈশ্বর খুব মহান করবেন| 2 এই সব দেশের লোক অন্ধকারে বাস করত| কিন্তু তারা মহা-আলোকটি দেখতে পাবে| ঐসব লোক কবরের মত অন্ধকার জায়গায় বাস করত| কিন্তু “মহা-আলোক” তাদের ওপর কিরণ দেবে| 3 হে ঈশ্বর, আপনিই জাতিটিকে বড় হতে দেবেন| আপনিই সেখানকার লোকদের সুখী করবেন| তারা আপনার উপস্থিতিতে যুদ্ধ জয়ের শেষে লুটের মাল ভাগের সময়কার আনন্দের মতো, ফসল তোলার সময়ের আনন্দের মতো সুখ ভোগ করবে| 4 কেননা আপনি তাদের ভারের বোঝা, তাদের কাঁধের বাঁক, শাস্তি দেওয়ার জন্য তাদের উপর ব্যবহৃত শএুদের দণ্ড সরিয়ে নেবেন| যেমন মিদিযনকে হারানোর পরে আপনি করেছিলেন| 5 যুদ্ধে দুর্বারভাবে এগিয়ে যাওয়া প্রতিটি বুট, যুদ্ধে সজ্জিত ব্যক্তির রক্তে রঞ্জিত সাজ-পোশাক আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হবে| 6 একটি বিশেষ শিশু জন্মগ্রহণ করার পরই এটা ঘটবে| ঈশ্বর আমাদের একটি পুত্র দেবেন| লোকদের নেতৃত্ব দেওয়ার ভার তার ওপর থাকবে| তার নাম হবে “আশ্চর্য়্য় মন্ত্রী, ক্ষমতাবান ঈশ্বর, চিরজীবি পিতা, শান্তির রাজকুমার|” 7 ন্যায়পরায়ণতা ও ধার্মিকতা দিয়ে তার শাসন স্থাপন করে| এখন থেকে এবং চির কালের জন্য দাযূদ পরিবার উদ্ভূত রাজার রাজত্বে শক্তি ও শান্তি বিরাজ করবে| তাঁর লোকদের জন্য প্রভুর প্রবল উদ্দীপনা তাঁকে এই সব কাজ করাবে| 8 আমার প্রভু যাকোবের সমস্ত লোকদের বিরুদ্ধে এক আদেশ দেবেন| ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে এই আদেশ পালন করা হবে| 9 তখন ইস্রায়েলের লোক এমনকি শমরিয়ার প্রধানরাও জানতে পারবে যে ঈশ্বর তাদের শাস্তি দিয়েছেন|এখন তারা অহঙ্কারী এবং দাম্ভিক| তারা বলে, 10 “এই ইঁটগুলো হয়তো ভেঙে পড়তে পারে, কিন্তু আমরা আবার শক্তিশালী পাথর দিয়ে সেটি গড়ে তুলব| এই সুকমোর গাছগুলি হয়তো কাটা যেতে পারে, কিন্তু আমরা সেখানে নতুন গাছ লাগাব| এবং এই নতুন গাছগুলি হবে বড় এবং শক্তিশালী এরস গাছ|” 11 তাই প্রভু ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য লোকের খোঁজ করবেন| প্রভু তাদের বিরুদ্ধে রত্সীনের শএুদের কাজে লাগাবেন| 12 প্রভু পূর্ব থেকে অরাম এবং পশ্চিম থেকে পলেষ্টীয়দের আনবেন| ঐ শএুরা তাদের সৈন্যবাহিনী ব্যবহার করে ইস্রায়েলকে পরাজিত করবেন| কিন্তু তবুও ইস্রায়েলের ওপর থেকে প্রভুর রোধ যাবে না| তবুও প্রভু এখানকার লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন| 13 ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের শাস্তি দিলেও তারা পাপ কাজ করা বন্ধ করবে না| তারা প্রভু সর্বশক্তিমানকে মেনে চলবে না| 14 তাই প্রভু ইস্রায়েলের মাথা এবং লেজকে, বৃন্ত ও ডালপালাকে এক দিনেই কেটে ফেলবেন| 15 (এখানে মাথার মানে হল শহরের সম্মানীয গুরুত্বপূর্ণ নেতা বা প্রধান| লেজ মানে হল মিথ্যা কথা বলে এমন ভাব্বাদী|) 16 যে সব নেতারা লোকদের ভুলপথে নিয়ে যাচ্ছে তাদের ও তাদের অনুসরণকারীদের ধ্বংস করা হবে| 17 এসব লোকগুলো দুষ্ট| প্রভু তরুণদের নিয়ে খুশী নন| তিনি তাদের বিধ্বা পত্নী ও অনাথ ছেলেমেয়েদের ওপর করুণা করবেন না| কারণ লোকরা দুষ্ট এবং এমন কাজ করে যা ঈশ্বর বিরুদ্ধ| তারা মিথ্যা কথা বলে| তাই ঈশ্বর এদের ওপর রুদ্ধ থাকবেন এবং এদের শাস্তি চলতেই থাকবে| 18 দুষ্ট বস্তু হল ছোট্ট আগুনের মতো| প্রথমে এই আগুন আগাছা এবং কাঁটাঝোপকে গ্রাস করে| তারপর সেই আগুন বনের আর বড় ঝোপঝাড়কে ভস্মীভূত করে| অবশেষে এটা প্রকাণ্ড আগুনের আকার ধারণ করে সব কিছুকে গ্রাস করে ফেলে| 19 প্রভু সর্বশক্তিমান খুবই রুদ্ধ হয়েছেন| তাই গোটা দেশ পুড়ে ছারখার হবে| সেই আগুনে সমস্ত লোক দ3 হবে| কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে সমবেদনা জানাবে না, এমন কি নিজের ভাইকেও নয়| 20 খিদের জ্বালায় লোকরা ডান দিক থেকে কিছু খাবার ছিনিয়ে নেবে, কিন্তু তবু তারা ক্ষুধার্ত থেকে যাবে| তারা বাঁদিক থেকে কিছু খাবার ছিনিয়ে নেবে, কিন্তু তবু তাদের পেট ভরবে না| তারপর প্রত্যেকটি লোক তাদের নিজেদের দেহের মাংস খেতে থাকবে| 21 এর অর্থ হল মনঃশি ইফ্রযিমকে ও ইফ্রযিম মনঃশিকে এবং তারপর উভয়ে এক সঙ্গে যিহূদাকে আক্রমণ করবে|তবুও ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে প্রভুর রোধ মিটবে না| তিনি সেখানকার লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তখনও প্রস্তুত থাকবেন|
1 বাজে, অসত্ বিধি প্রনয়ণকারীদের দেখ| এই বিধি প্রনয়ণকারীরা এমন সব বিধি রচনা করে যা সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলে| 2 এই বিধি প্রণযনকারীরা গরীব মানুষের প্রতি ন্যায় সঙ্গত নয়| তারা গরীব মানুষের অধিকার কেড়ে নেয| তারা বিধ্বা এবং অনাথ ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে জিনিসপত্র চুরি করে নেওয়া অনুমোদন করে| 3 হে বিধি প্রণযনকারী, তোমরা যে সব কাজ করছ সেসব কাজের কৈফিযত্ যখন চাওযা হবে তখন তোমরা কি করবে? তোমাদের দূরের একটা দেশ থেকে ধ্বংস আসছে| তোমরা তখন কোথায় সাহায্যের জন্য ছুটবে? তোমাদের টাকাপয়সা ও ধনসম্পদ তোমাদের কোন সাহায্য করতে পারবে না| 4 তোমাদের এক জন বন্দীর পিছনে লুকোতে হবে অথবা তোমরা একজন মৃত দেহের নীচে পড়বে| ঈশ্বর তবুও রুদ্ধ থাকবেন| তিনি তোমাদের শাস্তি দেবার জন্য প্রস্তুত হবেন| 5 ঈশ্বর বলেছেন, “আমি অশূরকে একটা লাঠির মতো ব্যবহার করব| এোধর বশে, ইস্রায়েলকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমি অশূরকে কাজে লাগাব| 6 যে সব লোকরা অসত্ এবং নোংরা কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি অশূরকে পাঠাবো| আমি এই সব লোকের ওপর ভীষণ রুদ্ধ, তাই আমি অশূরকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আদেশ দেব| সে তাদের পরাজিত করে তাদের সব সম্পদ লুঠ করে নেবে| অশূর ইস্রায়েলকে রাস্তায় কাদার মতো মাড়াবে| 7 “কিন্তু অশূর বুঝতে পারবে না যে আমি তাকে কাজে লাগিয়েছি| অশূর ভাবতে পারবে না যে সে আমার অস্ত্র| সে শুধু অন্য লোকদের হত্যা করতে চাইবে| অশূর বহু দেশকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছে| 8 অশূর মনে মনে বলে, ‘আমার সব নেতারা কি রাজাদের মত নয়? 9 কল্নো কি কর্কমীশের মতো নয়? হমাত্ কি অর্পদের মতো নয়? শমরিয়া কি দম্মেশকের মতো নয়? 10 আমি ঐ দুষ্ট রাজ্যগুলিকে পরাজিত করেছি এবং এখন আমি ওগুলি নিয়ন্ত্রণ করছি| এই সব দেশের লোকরা যেসব মূর্ত্তির পূজো করে তা জেরুশালেম ও শমরিয়ার থেকে বেশী| 11 আমি শমরিয়া এবং তার মূর্ত্তিগুলির যে দশা করেছি জেরুশালেম ও তার মূর্ত্তিগুলির দশাও তাই করব|”‘ 12 সিয়োন পর্বত ও জেরুশালেমে প্রভু নিজের পরিকল্পনা মতো সমস্ত কাজ শেষ করার পর তিনি অশূরকে শাস্তি দেবেন| অশূরের রাজা খুবই দাম্ভিক হয়ে উঠবেন আর এই অহঙ্কারের ফলে তিনি অনেক অর্থহীন কু-কাজ করবেন| তাই ঈশ্বর তাকে শাস্তি দেবেন| 13 অশূরের রাজা বলেন, “আমি খুবই জ্ঞানী| আমি আমার জ্ঞান ও ক্ষমতা দিয়ে বহু বড় বড় কাজ করেছি| আমি বহু জাতিকে পরাজিত করে তাদের ধনসম্পদ লুঠ করেছি এবং তাদের এীতদাস বানিয়েছি| আমি খুবই প্রতাপশালী লোক| 14 কোন কোন লোক যেমন পাখির বাসা থেকে অনায়াসে তাদের ডিম নিয়ে নেয, তেমনি আমিও নিজ হাতে সব দেশের ধনসম্পদ অনায়াসে লুঠ করেছি| একটা পাখি প্রাযই তার ডিম এবং বাসাকে একলা রেখে পালায়| তাই বাসাকে আগল দেবার জন্য বা কিচির-মিচির করে ডানা, ঠোঁট দিয়ে লড়াই করে ডিমকে রক্ষা করার জন্য কোন পাখি না থাকায় লোকে অনায়াসেই সেই ডিম নিয়ে পালায়| তেমনি গোটা পৃথিবীকে নিজের অধীনে আনার সময় আমাকে নিরস্ত করার মতো সাহস ও শক্তি কারও ছিল না|” 15 যে লোক কুড়ুল চালায কুড়ুল কি তার থেকে নিজেকে বেশী শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে? একটা করাত কি করাত চালকের থেকে নিজেকে শক্তিশালী বলে মনে করে? কিন্তু অশূর মনে করে সে ঈশ্বরের চেয়ে বেশী ক্ষমতাবান ও গুরুত্বপূর্ণ| কোন লোক লাঠি দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়ার পর লাঠি নিজেকে লোকটির চেয়ে বেশী ক্ষমতাবান মনে করলে যেমন হয়, অশূরের ভাবনাও অনেকটা সে রকমই| 16 অশূর নিজেকে মহান মনে করে| তাই তার দম্ভকে খর্ব করার জন্য প্রভু সর্বশক্তিমান অশূরের বিরুদ্ধে ভযানক রোগ পাঠাবেন| এক জন অসুস্থ যেমন করে তার ওজন হারায় ঠিক সেই ভাবে অশূরও তার ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি হারাবেন| তখন অশূরের মহত্ব ধ্বংস হবে| যতক্ষণ না সবকিছু বিনষ্ট হয় ততক্ষণ এটা একটা জ্বলন্ত অঙ্গারের মতো থাকবে| 17 ইস্রায়েলের আলো (ঈশ্বর) হবে আগুনের মতো| পবিত্র এক জনটি হবেন আগুনের শিখার মতো| তিনি ইস্রায়েলের আগাছা ও কাঁটাঝোপকে এক দিনে পুড়িয়ে দেবেন| 18 তারপর আগুন আরও ব্যাপক হয়ে দ্রাক্ষাক্ষেত এবং বড় বড় গাছকে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে| অবশেষে লোক জন সমেত সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে| অশূর রাজ্য প্রায ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে| অশূরের অবস্থা হবে পচা মোটা কাঠের টুকরোর মতো| 19 বনের অবশিষ্ট গাছের সংখ্যা এত কমে যাবে যে একটা ছোট্ট শিশুর পক্ষেও তা গুনতে অসুবিধা হবে না| 20 সেই সময় ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশ এবং যাকোব পরিবারের বেঁচে যাওয়া লোকরা তাদের অত্যাচারীদের ওপর আর নির্ভর করবে না| তারা ইস্রায়েলের পবিত্রতম প্রভুর ওপর যথার্থভাবে নির্ভর করতে শিখবে| 21 যাকোব পরিবারের জীবিত লোকরা আবার সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসবে| 22 হে ইস্রায়েল, তোমার লোকের সংখ্যা বিশাল| অনেকটা সমুদ্রের বালুকণার মতো| কিন্তু তাদের মধ্যে খুব অল্প লোকই বেঁচে থাকবে এবং তারা ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসবে| কিন্তু প্রথমে, তোমাদের দেশটি ধ্বংস হবে| ঈশ্বর ঘোষণা করেছেন যে তিনি তোমাদের দেশ ধ্বংস করবেন| তারপর ভূখণ্ডটির ওপর প্লাবনের মতো সুবিচার চলে আসবে| 23 আমার গুরু, প্রভু সর্বশক্তিমান নিশ্চিত ভাবেই দেশকে ধ্বংস করবেন| 24 অতএব আমার প্রভু, সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “সিয়োন নিবাসী আমার লোকরা তোমরা অশূরকে ভয় পেও না| অতীতে যেমন মিশর করেছিল তেমনি ভাবে অশূরও তোমাদের প্রহার করবে| এটা ঠিক যেন অশূর তোমাদের লাঠি দিয়ে প্রহার করছে| 25 কিন্তু অল্প সময় পরে আমার রাগ পড়ে যাবে| মনে হবে যে অশূর তোমাদের যথেষ্ট শাস্তি দিয়েছে| তাই আর শাস্তির দরকার নেই|” 26 তারপর প্রভু সর্বশক্তিমান অশূরকে চাবুক দিয়ে মারবেন যেমন প্রভু অতীতে, রাবেন শৈলে মিদিযনকে পরাজিত করেছিলেন| যখন প্রভু অশূরকে আক্রমণ করবেন তখন একই রকম ঘটনা ঘটবে| প্রভু একদা লাঠিকে সমুদ্রের ওপর তুলে ধরে তার লোকদের মিশরের হাত থেকে রক্ষা করে মিশরকে শাস্তি দিয়েছিলেন| এটা সে রকমই হবে যখন প্রভু তার লোকদের অশূরের হাত থেকে রক্ষা করবেন| 27 একটা দীর্ঘ কাঠের দণ্ড কাঁধে বইলে যে কষ্ট হয় অশূর তোমাদের জন্য সে রকম অসুবিধার সৃষ্টি করবেন| কিন্তু সেই কাঠের দণ্ড তোমার কাঁধ থেকে সরে যাবে| ঐ কাঠের দণ্ড তোমার ঈশ্বরের শক্তিতে ভেঙে যাবে| 28 সেনাবাহিনী অযাতের কাছে প্রবেশ করবে| তারা মিগ্রোণ হেঁটে পেরিযে আসবে| মিক্মসে সেনারা রসদ রাখবে| 29 সেনারা (মাবারা) “এসিং” দিয়ে নদী পার হবে| তারা জেরুশালেমের উত্তরের শহর গেবাতে রাত কাটাবে| রামা শহর ভয়ে কাঁপবে| শৌলের গিবিয়াতে লোকরা ভয়ে পালাবে| 30 ওহে ‘বাথগল্লীম’ তুমি চিত্কার কর! লয়িশা শোন| অনাথোত্ উত্তর দাও| 31 মদ্মেনার লোকরা পালাচ্ছে| গেবীমের লোকরা লুকোচ্ছে| 32 আজকে, সেনারা নোবেতে থামবে এবং জেরুশালেমের সিয়োন পর্বতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে| 33 দেখ, আমাদের প্রভু, সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান বিরাট বৃক্ষটি (অশূর) আতঙ্ক দিয়ে কেটে ফেলবেন| গুরুত্বপূর্ণ লোক কাটা পড়বে| এবং গর্বিত লোকদের বিনীত করা হবে| 34 প্রভু কুঠার দিয়ে বন কেটে ফেলবেন এবং লিবানোনের বড় বড় বৃক্ষগুলির গুরুত্বপূর্ণ লোকদের পতন হবে|
1 একটি ছোট গাছ (শিশু) য়িশযের গোড়া (পরিবার) থেকে বাড়বে| ঐ শাখাটি য়িশযের শিকড়গুলি থেকে বাড়বে| 2 আর প্রভুর আত্মা এই বালকটির ওপরে ভর করবে| এই আত্মা বালকটিকে জ্ঞান, বুদ্ধি, পথনির্দেশ এবং শক্তি দেবে| এই আত্মা বালকটিকে প্রভুকে জানার এবং তাঁকে সম্মান করার শিক্ষা দেবে| 3 প্রভুর প্রতি সমীহ দ্বারা বালকটি অনুপ্রাণিত হবে|সে বাইরের চেহারা দিয়ে কোন কিছু বিচার করবে না| কোন কিছু শোনার ভিত্তিতে সে রায় দেবে না| 4 সে সততা ও ধার্মিকতার সঙ্গে দীন-দরিদ্রদের বিচার করবে| সে ন্যাযের সঙ্গে দেশের দীনহীনদের বিভিন্ন বিষয়ের নিষ্পত্তি করবে| যদি সে কোন লোককে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয তাহলে তার আদেশমতো ঐ লোকটিকে শাস্তি পেতেই হবে| যদি সে লোকদের মৃত্যুর আদেশ দেয় তাহলে তাদের হত্যা করা হবে| সুবিচার, ধার্মিকতাই এই শক্তির অন্যতম উত্স| এই গুণগুলি তাঁর কোমরের বন্ধনীর মতো হবে| 5 6 সে সময় নেকড়ে বাঘ এবং মেষশাবক এক সঙ্গে শান্তিতে বাস করবে| বাঘ এবং ছাগল ছানা এক সঙ্গে শান্তিতে শুয়ে থাকবে| বাছুর, সিংহ এবং ষাঁড় একসঙ্গে শান্তিতে বাস করবে| এবং একটা ছোট্ট শিশু তাদের চালনা করবে| 7 গরু এবং ভাল্লুক একসঙ্গে শান্তিতে বাস করবে| তাদের সমস্ত শাবকরাও একসঙ্গে বাস করবে| কেউ কারো অনিষ্ট করবে না| সিংহ গরুর মতো খড় খাবে| এমনকি সাপও মানুষকে দংশন করবে না| 8 একটা শিশুও নির্ভয়ে কেউটে সাপের গর্তের ওপর খেলা করতে পারবে| বিষাক্ত সাপের গর্তের মধ্যেও সে নির্দ্বিধায হাত দিতে পারবে| 9 এই সব বিষয়গুলি আসলে প্রমাণ করে কেউ কারও কোন ক্ষতি না করে পরস্পর শান্তিতে বাস করবে| লোকরা আমার পবিত্র পর্বতের কোন অংশে হিংসা কিংবা ধ্বংসের আশ্রয় নেবে না| কারণ এই সব লোকরা যথার্থভাবে প্রভুকে চেনে ও জানে| ভরা সমুদ্রের জলের মতো প্রভু বিষয়ক অগাধ জ্ঞানে তারা পরিপূর্ণ থাকবে| 10 সে সময় য়িশযের পরিবারবর্গ থেকে একজন বিশেষ ব্যক্তি থাকবেন| এই ব্যক্তি লোকের পতাকা স্বরূপ হবেন| এই “পতাকা” সকল দেশকে তাঁর চারপাশে আসার জন্য পথ দেখাবে| সব দেশ তাঁর কাছে তাঁদের করণীয কর্তব্য়ের ব্যাপারে জানতে চাইবে| এবং তাঁর বিশ্রামস্থল মহিমান্বিত হবে| 11 সেদিন প্রভু (ঈশ্বর) তাঁর লোকদের অবশিষ্ট অংশকে মুক্ত করে আনতে দ্বিতীয় বারের জন্য হস্তক্ষেপ করবেন| (অর্থাত্ তিনি অশূর, মিশর, পথ্রোষ, এলম, বাবিল, হমাত্ এবং সমুদ্রের চতুর্দিকের সমস্ত উপত্যকা থেকে অবশিষ্ট লোকদের আনবেন|) 12 আর তিনি সমস্ত লোকদের জন্য “পতাকা” তুলবেন| ইস্রায়েল ও যিহূদা থেকে বিতাড়িত লোক যারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ছিন্নমূলের মতো বাস করছিল তাদের তিনি একত্রিত করবেন| 13 এই সময় ইফ্রযিমের (ইস্রায়েলের) ঈর্ষা দূর হবে| ইফ্রযিম আর যিহূদার ঈর্ষা করবে না| যিহূদার আর কোন শএু থাকবে না| এবং যিহূদা ইফ্রযিমের অসুবিধার কারণ হবে না| 14 কিন্তু ইফ্রযিম এবং যিহূদা একসঙ্গে পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করবে| কোন ছোট্ট প্রাণীর ওপর দুটি পাখি এক সঙ্গে ছোঁ মারলে যেমন হয় তাদের আক্রমণ অনেকটা সে রকম হবে| দুটি দেশ এক সঙ্গে পূর্বের দেশ থেকে ধনসম্পদ লুঠ করবে| ইফ্রযিম এবং যিহূদা ইদোম, মোয়াব এবং অম্মোনের লোকদের নিয়ন্ত্রণ করবে| 15 প্রভু মিশরের উপসাগরকে শুকিয়ে ফেলবেন এবং ধ্বংস করে ফেলবেন| তিনি ফরাত্ নদীর ওপর তাঁর হাত আন্দোলিত করবেন এবং ফরাত্ সাতটা ছোট ছোট নদীতে বিভক্ত হবে| এই ছোট ছোট নদীগুলি গভীর হবে না| লোকরা অনায়াসেই জুতো পরে নদীগুলির ওপর দিয়ে হেঁটে পার হতে পারবে| 16 আর মিশর দেশ থেকে ইস্রায়েল বেরিয়ে আসার সময় যেমন তার জন্য পথের সৃষ্টি হয়েছিল তেমনি অশূরে জীবিত থাকা তাঁর লোকদের অশূর ত্যাগের জন্য ঈশ্বর একটি নতুন পথের সৃষ্টি করবেন|
1 আর সেদিন তুমি বলবে:“হে প্রভু আমি তোমার প্রশংসা করি! তুমি আমার প্রতি রুদ্ধ ছিলে| কিন্তু এখন আর আমার প্রতি রুষ্ট থেকো না! আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা প্রদর্শন কর|” 2 ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করেন| আমি তাকে বিশ্বাস করি| আমি ভয় পাই না| তিনি আমাকে রক্ষা করেন| প্রভু য়িহোবা আমার শক্তিও বটে|তিনি আমাকে রক্ষা করেন এবং আমি তাঁর প্রশংসার গান গাই| 3 পরিত্রাণের ঝর্ণা থেকে তোমরা জল তুলবে এবং তারপর তোমরা আনন্দিত হবে| 4 তারপর তুমি বলবে, “প্রভুর প্রশংসা কর! তাঁর নাম উপাসনা কর! সমস্ত দেশে তাঁর কর্মের কথা বিদিত করে দাও| ঘোষণা কর যে তাঁর নাম মহান!” 5 প্রভুর প্রশংসার গান গাও! কেন না, তিনি মহান কাজ করেছেন| এই খবর পৃথিবীময় ছড়িয়ে দাও| পৃথিবীর সব মানুষ তা জানুক| 6 হে সিয়োনবাসীগণ উচ্চস্বরে ঈশ্বরের স্তবগান কর| ইস্রায়েলের পবিত্রতম ঈশ্বর অত্যন্ত সএযিভাবে তোমার সঙ্গে আছেন| তাই সকলে খুশী হও|
1 আমোসের পুত্র যিশাইয় ঈশ্বরের কাছ থেকে বাবিল বিষয়ক এই দুঃখজনক বার্তা পান| 2 ঈশ্বর বললেন,“তোমরা বৃক্ষশূন্য পর্বতের ওপরে পতাকা তোল| লোকদের হাত নেড়ে চিত্কার করে ডাক| তাদের বল, গুরুত্বপূর্ণ লোকদের জন্য যে প্রবেশপথ সেই পথ দিয়ে প্রবেশ করতে|” 3 ঈশ্বর বললেন,“আমি ঐসব লোকদের অন্যান্যদের থেকে আলাদা করেছি এবং তাদের বিষয়ে আমি নিজে আদেশ দিয়েছি| আমি রুদ্ধ| আমি লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য আমার শক্তিশালী যোদ্ধাদের একত্র করেছি, যারা আমার গর্ব ও আনন্দ| 4 “পর্বতগুলোতে একটা বিরাট শব্দ আছে| সেই শব্দটি শোন! এটা পর্বতমালায় বহু জনসমাগমের শব্দ| অনেক রাজ্যের লোকরা একসঙ্গে জড়ো হয়েছে| প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর সেনাবাহিনীকে ডাকছেন| 5 প্রভু এবং তার সেনাদল আসছে| দূর দেশ থেকে তারা আসছে, দিগন্তের ওপার থেকে| প্রভু তাঁর রোধ প্রদর্শন করতে সেনাদলকে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করবেন, এই সেনাদল গোটা দেশকে ধ্বংস করবে|” 6 হাহাকার কর, নিজেদের জন্য দুঃখ কর| কেননা প্রভুর বিশেষ দিন আগত প্রায| সেই সময়ে আসছে যখন শএুরা তোমার সম্পদ লুঠ করবে| সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বয়ং তা ঘটাবেন| 7 লোকরা তাদের সাহস হারাবে| ভয় মানুষকে দুর্বল করবে| 8 প্রতিটি মানুষই ভয় পাবে| এই ভয় মহিলাদের প্রসব বেদনার মতো তাদের কষ্ট দেবে| তাদের মুখ হবে অগ্নিবর্ণ| লোকে একে অপরের দিকে ভযার্ত চোখে বিস্মযে তাকিযে থাকবে| 9 দেখ, প্রভুর বিশেষ দিন আসছে| এই দিন হবে ভয়ঙ্কর| ঈশ্বর রোধ গোটা দেশকে ধ্বংস করবেন| ঈশ্বর এই দেশের সমস্ত পাপী লোকদের ধ্বংস করবেন| 10 সেই দিন আকাশে অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে| সূর্য়, চাঁদ এবং তারারা কিরণ দেবে না| 11 ঈশ্বর বললেন, “আমি পৃথিবীতে বিপর্য়য ঘটাব| আমি দুষ্ট লোকদের তাদের পাপের জন্য শাস্তি দেব| আমি অহঙ্কারী লোকদের তাদের দর্প হারিযে দেব| আমি নিষ্ঠুর লোকদের গর্ব চূর্ণ করে দেব| 12 শুধুমাত্র অল্প কয়েকজন লোক বেঁচে থাকবে| এদের সংখ্যা এত নগন্য হবে যে তা সোনা খোঁজার মতোই কঠিন| এবং এইসব লোকেরা খাঁটি সোনার থেকেও অনেক বেশী দামী| 13 রোধ আমি আকাশমণ্ডলকে কম্পিত করব| এর ফলে পৃথিবী টলে গিয়ে স্থান ভ্রষ্ট হবে|”যেদিন প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর রোধর বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন সেদিন এসব ঘটনা ঘটবে| 14 তখন বাবিল থেকে লোকরা আহত হরিণের মতো, মেষপালকবিহীন মেষের মতো নিজ নিজ দেশের দিকে ছুটে পালাবে| 15 কিন্তু শএুরা বাবিলের লোকদের তাড়া করবে এবং যে ধরা পড়বে তাকেই তারা তরবারি দিয়ে হত্যা করবে| 16 তাদের বাড়িগুলি লুণ্ঠিত হবে| তাদের স্ত্রীরা ধর্ষিত হবে| আর তাদের চোখের সামনেই তাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পিটিযে পিটিযে হত্যা করা হবে| 17 ঈশ্বর বললেন, “দেখ আমি মাদীয়দের সেনা দ্বারা বাবিলকে আক্রমণ করাব| রূপো ও সোনা দেওয়া হলেও মাদীয়র সেনারা লড়াই থামাবে না| 18 তীরন্দাজরা যুবকদের হত্যা করবে| শিশুদের তারা ক্ষমা করবে না| তারা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের প্রতিও করুণা করবে না| 19 “ঈশ্বর বাবিলকে ধ্বংস করবেন ঠিক যে ভাবে তিনি সদোম ও ঘমোরাকে ধ্বংস করেছিলেন| যদিও বাবিল হচ্ছে সব চেয়ে সুন্দর রাজ্য এবং সেখানকার নাগরিকদের গর্বস্বরূপ| 20 কিন্তু বাবিল আর সুন্দর থাকবে না| ভবিষ্যতে লোক সেখানে বাস করবে না| আরবীও সে স্থানে তাঁবু ফেলবে না| মেষপালকরা সেখানে মেষ চরাবে না| 21 শুধুমাত্র মরুভূমির হিংস্র বন্য জন্তু জানোযাররাই সেখানে বাস করবে| বাবিলের বাড়িতে কোন লোক বাস করবে না| সেখানে বন্য জন্তুরা শুয়ে থাকবে| বন্য ছাগলরা খেলা করবে| পেঁচা এবং বড় বড় পাখিতে বাড়িগুলি ভর্তি হয়ে যাবে| 22 বাবিলের সুন্দর প্রাসাদোপম মনোরম বাড়িগুলিতে বন্য কুকুর এবং নেকড়েরা চিত্কার করতে থাকবে| বাবিলকে ধ্বংস করা হবে| বাবিলের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে| বাবিলের দিন আর বাড়ানো হবে না|”
1 ভবিষ্যতে প্রভু যাকোবকে পুনরায় করুণা করবেন| প্রভু আবার একবার ইস্রায়েলের লোকদের বেছে নেবেন এবং তাদের দেশ তাদের ফিরিয়ে দেবেন| তখন বিদেশী লোকরা যাকোবের পরিবারবর্গের সঙ্গে সংযুক্ত হবে| এবং তারা একই পরিবারের লোক যাকোবের বংশোদ্ভূত বলে পরিগণিত হবে| 2 ঐ জাতির লোকরা ইস্রায়েলীয়দের ইস্রায়েলে ফিরিয়ে আনবে| ঐ জাতির লোকরা ইস্রায়েলের দাসে পরিণত হবে| তখন ইস্রায়েলকে যারা দখল করেছিল, ইস্রায়েল তাদের দখল করবে এবং যারা তাদের অত্যাচার করেছিল তাদের শাসন করবে| 3 প্রভু তোমাদের কঠোর পরিশ্রম দূর করে তোমাদের আরামের ব্যবস্থা করবেন| অতীতে তোমরা দাস ছিলে| লোকরা তোমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করেছিল| কিন্তু প্রভু তোমাদের কঠোর পরিশ্রমের অবসান ঘটাবেন| 4 সেদিন তোমরা বাবিলের রাজা সম্পর্কে এই গানটি গাইতে শুরু করবে| গানটি হল:রাজা তাঁর শাসনকালে অত্যন্ত জঘন্য ব্যক্তি ছিলেন| কিন্তু তাঁর শাসনকাল এখন শেষ হয়ে গেল| 5 প্রভু দুষ্ট শাসকদের রাজদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন| প্রভু তাদের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছেন| 6 বাবিলের রাজা রোধ তাঁর প্রজাদের মারধর করতেন| তিনি কখনোই তাঁর প্রজাদের মারধর থেকে রেহাই দেননি| তিনি এোধ প্রজাদের শাসন করেছেন| তিনি প্রজাদের আঘাত না করে ক্ষান্ত থাকেন নি| 7 কিন্তু এখন গোটা দেশ শান্ত ও সুস্থির হয়েছে| সকলে আনন্দ করতে শুরু করেছে| 8 তুমি এক জন শযতান রাজা ছিলে| কিন্তু তোমার শাসন শেষ হয়েছে| এমন কি দেবদারু ও লিবানোনের এরস বৃক্ষরাও তোমার পতনে খুশী| এই গাছরা বলে: “রাজা আমাদের কেটে ফেলত| কিন্তু রাজার পতন হয়েছে| সে আর কখনো উঠে দাঁড়াতে পারবে না|” 9 পাতাল তোমার আগমনে বিচলিত হচ্ছে| পাতাল পৃথিবীর সমস্ত প্রধানদের প্রেতাত্মাদের তোমার জন্য জাগিয়ে তুলছে| পাতাল রাজাদের তাদের সিংহাসন থেকে দাঁড় করাচ্ছে| তারা তোমার আগমনের জন্য প্রস্তুত| 10 এই সব নেতারা তোমার সঙ্গে মজা করবে| তারা বলবে: “তুমি এখন আমাদের মতোই একটি মৃতদেহ| তুমি ঠিক আমাদের মতোই|” 11 তোমার দম্ভ, তোমার অহঙ্কার পাতালে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে| তোমার বীণার সুর তোমার সেই গর্বিত আত্মার আগমন ঘোষণা করছে| পোকামাকড় তোমার দেহকে কুরে কুরে খাবে| তুমি তাদের ওপর বিছানার মতো শুয়ে থাকবে| কৃমিরা তোমার দেহকে কম্বলের মতো ঢেকে রাখবে| 12 তুমি সকালের তারার মতো ছিলে| কিন্তু এখন তোমার আকাশ থেকে পতন হয়েছে| একদা পৃথিবীর সমস্ত জাতি তোমার সামনে মাথা নত করেছে| কিন্তু এখন তোমাকে কেটে ফেলা হয়েছে| 13 তুমি সর্বদা নিজেকে বলতে: “আমি হব পরাত্পরের মতো| আমি স্বর্গারোহণ করব| ঈশ্বরের নক্ষত্রমণ্ডলীর উর্দ্ধে আমার সিংহাসন উন্নীত করব| আমি পবিত্র দেবতাদের সমাগম পর্বতে অধিষ্ঠান করব| ঐ পর্বতের ওপর দেবতাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাত হবে| 14 আমি মেঘের বেদীতে উঠব| আমি পরাত্পরের তুল্য হব|” 15 কিন্তু সেটা ঘটেনি| তুমি ঈশ্বরের সঙ্গে স্বর্গে যেতে পারো নি| তোমাকে সমাধিস্থলের গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করা হয়েছে| 16 লোকরা তোমাকে দেখে তোমার কথা ভাববে| দেখবে তুমি শুধুই একটা মৃতদেহ| তারা দেখবে যে তুমি একটি শবদেহের চেয়ে বেশী কিছু নও এবং বলবে: “এ-ই কি সেই একই ব্যক্তি যে পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের প্রচণ্ড ভয়ের কারণ ছিল? 17 এ কি সেই ব্যক্তি যে নগরের পর নগর ধ্বংস করে তাকে মরুভূমিতে পরিণত করত? এ কি সেই ব্যক্তি যে যুদ্ধবন্দী লোকদের বাড়ি ফিরতে দিত না?” 18 পৃথিবীর সব রাজা সসম্মানে মারা গেছেন| প্রত্যেক রাজারই নিজস্ব সমাধি রয়েছে| 19 কিন্তু তোমার মতো অত্যাচারী রাজাকে কবরও প্রত্যাখ্যান করেছে| তোমার অবস্থা এখন গাছের কাটা ডালের মতো| গাছের ডালকে কেটে যেমন ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় তেমনি তুমিও নিজ কবরস্থান থেকে দূরে নিক্ষিপ্ত হয়েছ| তুমি যুদ্ধে নিহত সেইসব ব্যক্তির শরীর দিয়ে ঢাকা যারা গর্তের মধ্যে পাথরের মত গড়িযে যায়| তুমি সেই মৃতদেহের মত যাকে মাড়িয়ে যাওয়া হয়| 20 অনেক রাজা মারা গিয়েছে এবং তাদের নিজস্ব কবর রয়েছে| কিন্তু তুমি তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারো না| কারণ তুমি তোমার নিজের দেশকেই ধ্বংস করেছ| তুমি তোমার প্রজাদের হত্যা করেছ| তোমার ছেলেমেয়েরা তোমার মতো ধ্বংসকার্য়্য় চালিযে যাবে না| তাদের বিরত করা হবে| 21 তোমরা তার ছেলেমেয়েদের হত্যার জন্য নিজেদের প্রস্তুত কর| তাদের হত্যা কর কারণ তাদের পিতা দোষী| তার ছেলেমেয়েরা আর কখনোই দেশের শাসন কর্তৃত্ব হাতে নিতে না পারে| তার ছেলেমেয়েরা আবার কখনও পৃথিবীটাকে তাদের নিজেদের শহরে ভরিয়ে ফেলতে পারবেনা| 22 প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, “আমি বিখ্যাত শহর বাবিলের খ্যাতিকে শেষ করব| আমি এখানকার লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব| আমি বাবিলের সমস্ত লোককে ধ্বংস করব| আমি তাদের ছেলেমেয়েদের, তাদের পৌত্র-পৌত্রীদের এবং তাদের প্রপৌত্র-পৌত্রিদের ধ্বংস করব|” প্রভু নিজে একথাগুলি বলেছেন| 23 প্রভু বললেন, “আমি বাবিলকে পশুদের (অবাধ) বিচরণ ভূমিতে পরিণত করব| এই দেশ (শহর) জলাভূমিতে পরিণত হবে| আমি ‘ধ্বংসের ঝাঁটা’ দিয়ে বাবিলকে বিদায করব|” প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন| 24 প্রভু সর্বশক্তিমান প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, “আমি শপথ করছি যে এই সব ঘটনাগুলি আমার ভাবনা, পরিকল্পনা এবং সঙ্কল্প মতো ঘটবেই| 25 আমি আমার দেশে অশূর রাজকে ধ্বংস করব| আমি আমার পর্বতগুলোর ওপরে ঐ রাজার ওপর দিয়ে হেঁটে যাব| এই রাজাটি আমার লোকদের দাসে পরিণত করেছিল| সে তাদের দিয়ে ভারী বোঝা বহন করিযেছে| এই ভার সরিয়ে ফেলা হবে| 26 পৃথিবীব্যাপী আমার সমস্ত লোকদের আমি এগুলি করার পরিকল্পনা করেছি| সমস্ত দেশকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমি আমার ক্ষমতাকে কাজে লাগাব|” 27 প্রভু যখন কোন পরিকল্পনা করেন তখন কারও পক্ষেই তা ব্যর্থ করা সম্ভব নয়| যখন প্রভু লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তাঁর হাত তোলেন তখন কারও পক্ষেই তাঁকে থামানো সম্ভব নয়| 28 যে বছর আহস রাজার মৃত্যু হয় সে বছর এই বার্তা প্রদান করা হয়েছিল| 29 হে পলেষ্টীয়, যে রাজা তোমাদের ওপর অত্যাচার করত সে মারা যাওয়ায় তোমরা খুবই খুশী হয়েছ| কিন্তু তোমরা সত্যি সত্যিই আনন্দিত হযো না| এটা সত্যি যে তার শাসনের অবসান ঘটেছে| কিন্তু এরপর রাজার পুত্র শাসন করবে| এবং এটা কোন সাপের আরও বিষাক্ত সাপের জন্ম দেওয়ার মতো ব্যাপার| এই নতুন রাজা তোমাদের কাছে একটি অতি বেগবান এবং ভয়ঙ্কর সাপের মতো হবে| 30 তবে আমার দীনহীন লোকরা নিরাপদে খেতে পারবে, ঘুমাতে পারবে এবং নিজেদের নিরাপদ মনে করবে| তাদের ছেলেমেয়েরা নিরাপদে থাকবে| আমার দরিদ্র লোকরা শুতে পারবে এবং নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারবে| কিন্তু আমি দুর্ভিক্ষ দ্বারা তোমার পরিবারকে হত্যা করব এবং তোমার অবশিষ্ট সমস্ত লোক মারা যাবে| 31 হে পুরদ্বারবাসী তোমরা কাঁদ| হে পুরবাসী তোমরা বিলাপ কর| হে পলেষ্টীয়বাসী তোমরা ভয় পাবে| তোমাদের সাহস গরম মোমের মতো গলে যাবে| দেখ, ধোঁযা উত্তরের দিক থেকে আসছে| অশূর থেকে শক্তিশালী সেনাবাহিনী আসছে| 32 এই সেনারা তাদের দেশে বার্তাবাহক পাঠাবে| এই বার্তাবাহকরা তাদের লোকদের কি বলবে? তারা ঘোষণা করবে: পলেষ্টীয় পরাজিত হয়েছে| কিন্তু প্রভু সিয়োনকে শক্তিশালী করেছেন এবং তার দীন দরিদ্র লোকরা নিরাপদে সেখানে আশ্রয় নেবে|
1 এটা মোয়াব সম্পর্কে একটি বার্তা: এক দিন রাতে মোয়াবের আর নগর থেকে সেনারা সমস্ত ধনসম্পদ লুঠ করল| ঐ রাতেই নগরটিকে ধ্বংস করা হল| এক দিন রাতে সেনারা মোয়াবের কীর নগর লুঠ করল| ঐদিন রাতেই নগরটিকে ধ্বংস করা হল| 2 রাজার পরিবার এবং দীবন শহরের লোকরা কান্নাকাটি করার জন্য উচ্চ স্থানে যাচ্ছে| মোয়াবের লোকরা নবো ও মেদবা শহরের জন্য কাঁদছে| সকলে তাদের শোকপ্রকাশের জন্য তাদের মাথা ও দাড়ি কামিয়ে ফেলেছে| 3 বাড়ির ছাদ থেকে রাস্তাঘাট পর্য়ন্ত সর্বত্রই মোয়াবের লোকরা শোকের পোশাক পরে কান্নাকাটি করছে| 4 হিশ্বোন ও ইলিয়ালী শহরের লোকরা এত জোরে কান্নাকাটি করছে যে, সুদূর য়হস পর্য়ন্ত তার শব্দ শোনা যাচ্ছে| এমনকি সেনারাও আকস্মিক ভয় পেয়ে গিয়েছে| তারা ভয়ে কাঁপছে| 5 মোয়াবের দুঃখে আমার হৃদয় ব্যথিত| লোকরা নিরাপত্তার জন্য ছুটছে| তারা সোযর, ইগ্লত্-শলিশীযায় পর্য়ন্ত যাচ্ছে| তারা লূহীতের পার্বত্যময় পথ ধরে ওঠার সময় বিশ্রীভাবে চিত্কার করে কাঁদছে| হোরোণযিমের পথে হাঁটার সময় লোকরা চিত্কার করে কাঁদছে| 6 কিন্তু নিম্রীমের ক্ষুদ্র নদী মরুভূমির মতো শুকিয়ে গিয়েছে| সমস্ত ছোট গাছপালা শুকিয়ে গিয়েছে| কোন কিছুই আর সবুজ নেই| 7 তাই, মোয়াব ত্যাগ করার আগে লোকরা তাদের নিজ নিজ জিনিসপত্র সংগ্রহ করে জড় করছে এবং উইলো একি এর ওপারে নিয়ে যাচ্ছে| 8 মোয়াবের সর্বত্রই আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে| ইগ্লযিম এবং বের্-এলীম শহরের লোকরা কাঁদছে| 9 দীমোনের জল রক্তে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে| এবং আমি দীমোনের জন্য আরো দুঃখ আনব| মোয়াবের খুব অল্পসংখ্যক লোক শএুদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গিয়েছে| কিন্তু এই সব লোকদের ভক্ষণ করার জন্য আমি অনেক সিংহ পাঠাব|
1 হে লোকরা, দেশের শাসকের জন্য তোমরা একটি উপহার পাঠাও| সেলা থেকে একটি মেষশাবক মরুভূমির মধ্যে দিয়ে সিয়োন কন্যা পর্বতের কাছে পাঠিয়ে দাও| 2 মোয়াবের মেয়েরা অর্ণোন নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছে| তারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সাহায্যের জন্য ছুটছে| তাদের অবস্থা যেন নীড় ভেঙে হারিযে যাওয়া ছোট্ট পাখির মতো| 3 তারা বলছে, “আমাদের সাহায্য কর, বলে দাও আমরা এখন কি করব! যেমন করে ছায়া মধ্যাহ্নের গনগনে সূর্য় থেকে আমাদের রক্ষা করে, তেমনি প্রভু শএুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা কর| আমরা শএুদের হাত থেকে পালিয়ে বেঁচ্ছেি| আমাদের আড়াল কর| আমাদের শএুদের হাতে তুলে দিও না|” 4 মোয়াবের লোকদের জোর করে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে| তাই তাদের তোমাদের দেশে বাস করতে দাও| শএুদের চোখ থেকে তাদের লুকিয়ে রাখো| লুঠতরাজ বন্ধ হবে| শএুরা পরাস্ত হবে| অত্যাচারী লোকরা দেশ ছেড়ে চলে যাবে| 5 তারপর দাযূদের পরিবার থেকে এক জন নতুন রাজা আসবেন| তিনি বিশ্বস্ত হবেন| তিনি দয়ালু এবং প্রেমিক হবেন| এই রাজা ন্যায্য বিচার করবেন| যা কিছু ভাল এবং সঠিক সে সব কাজ তিনি তাড়াতাড়ি করবেন| 6 আমরা মোয়াব্বাসীদের অহঙ্কার এবং দাম্ভিকতার কথা শুনেছি| তারা অহঙ্কারী এবং হিংস্র| তারা দম্ভ করে, কিন্তু তাদের দম্ভগুলি শুধুই কতগুলি ফাঁকা বুলি| 7 এই অহঙ্কারের জন্য গোটা মোয়াব দেশ ভুগবে| মোয়াবের সমস্ত লোক হাহাকার করবে| তারা দুঃখিত হবে এবং অতীতে তাদের যা যা ছিল তারা তা ফিরে পেতে চাইবে| 8 হিশ্বোনের ক্ষেত ও সিব্মার দ্রাক্ষাক্ষেত নষ্ট হয়ে গিয়েছে| বিদেশী শাসকরা তাদের সব দ্রাক্ষাগাছ কেটে ফেলেছে| সুদূর যাসের শহর পর্য়ন্ত এমনকি মরুভূমির ভেতর পর্য়ন্ত তাদের দ্রাক্ষা বাগান ছড়িয়ে থাকত| তাদের শাখাগুলি একেবারে সমুদ্রের ওপার পর্য়ন্ত ছড়িয়ে পড়ত| 9 “আমি যাসের এবং সিব্মার লোকদের সঙ্গে কাঁদব কারণ দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি ধ্বংস করা হয়েছে| আমি হিশ্বোন এবং ইলিয়ালীর লোকদের সঙ্গে কাঁদব কারণ কোন শস্য সংগ্রহ হবে না| কোন গ্রীষ্মকালীন ফসল উঠবে না| তাই কোন আনন্দ উল্লাস হবে না| 10 কারমেলে কোন আনন্দ গান হবে না| শস্য সংগ্রহের সময়কার আনন্দের আমি পরিসমাপ্তি ঘটাব| দ্রাক্ষারস তৈরীর জন্য যে সমস্ত দ্রাক্ষা তৈরি হয়ে আছে তা সব নষ্ট হয়ে যাবে| 11 তাই আমি মোয়াব এবং কীর্-হেরস এই দুটি শহরের জন্য খুবই দুঃখিত| 12 মোয়াবের লোকরা তাদের উপাসনালযে যাবে| লোকরা প্রার্থনা জানানোর চেষ্টা করবে| কিন্তু তারা তাদের পরিণাম কি হবে তা দেখতে পেয়ে এত দুর্বল হয়ে পড়বে যে আর প্রার্থনা করতে পারবে না|” 13 প্রভু মোয়াব সম্পর্কে এই ঘটনাগুলির কথা বহুবার বলেছেন| 14 এবং প্রভু এখন বলেন, “তিন বছরের মধ্যে এই বিপুল জনসংখ্যা এবং অন্যান্য জিনিষ, যার জন্য মোয়াব গর্বিত, তার বিশেষ কিছুরই অস্তিত্ব থাকবে না (ঠিক যেমন ভাড়া করা সহকারীরা সময় গোনে)| শুধুমাত্র ক্ষীণবল গুটিকতক লোক পড়ে থাকবে|”
1 এটা দম্মেশকের জন্য দুঃখের বার্তা| প্রভু বললেন এই ঘটনাগুলি দম্মেশকে ঘটবে:“দম্মেশক এখন একটি শহর| কিন্তু এই শহর ধ্বংস হয়ে যাবে| শহরে ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না| 2 লোকরা অরোয়ের শহরগুলি ত্যাগ করে পালাবে| এই সব খালি শহরে মেষের পাল যেখানে সেখানে অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারবে| তাদের বিরক্ত করা বা ভয় দেখানোর কেউ থাকবে না| 3 ইফ্রযিমের দুর্গ নগরীগুলি (ইস্রায়েল) ধ্বংস হয়ে যাবে| দম্মেশকের সরকার শেষ হয়ে যাবে| ইস্রায়েলে যে ঘটনা ঘটেছে অরামে তাই ঘটবে| সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ লোকদের অপসারণ করা হবে|”প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন এই ঘটনাগুলি ঘটবে| 4 যাকোবের সমস্ত মহিমা অবদমিত হবে| তার সমৃদ্ধি ক্ষয়লাভ করবে| 5 ঐ সময়টা রফাযীম উপত্যকায় ফসল তোলার সময়ের মতো হবে| শ্রমিকরা ক্ষেত থেকে ফসল তুলে তা এক জায়গায় জড়ো করে, তারপর তারা চারা গাছগুলি থেকে শস্যের মাথা কেটে নেয এবং শস্য সংগ্রহ করে| 6 সে সময়টা জলপাই (অলিভ) সংগ্রহের কালের মতো হবে| লোকরা জলপাই গাছ থেকে জলপাই তোলে| কিন্তু কয়েকটা জলপাই সাধারণত গাছের মাথায় থেকে যায়| কিছু কিছু গাছের ডালের মাথায় চার-পাঁচটা করে জলপাই পড়ে থাকে| এখানকার শহরগুলির অবস্থাও সেরকম হবে| প্রভু সর্বশক্তিমান এই ঘটনাগুলোর কথা বললেন| 7 সে সময়ে লোকরা তাদের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের খোঁজ করবেন| তাদের চোখ ইস্রায়েলের পবিত্রতমের দিকে চেয়ে থাকবে| 8 লোকরা তাদের তৈরী বেদীগুলোর দিকে যাবে না| তারা তাদের আশেরার খুঁটির কাছে এবং নিজেদের হাতে তৈরী সূর্য়দেবতার মূর্ত্তির কাছে বেদীতে যাবে না| 9 সে সময় সমস্ত দুর্গ শহর পরিত্যক্ত হবে| ঐ শহরগুলির অবস্থা ইস্রায়েলের লোকরা আসার আগে দেশের পর্বত ও জঙ্গলের পরিত্যক্ত ভূমির মতো হবে| অতীতে ইস্রায়েলের লোকদের আগমনের সময় অন্য সমস্ত লোকরা পালিয়ে গিয়েছিল| ভবিষ্যতে এই দেশ আবার পরিত্যক্ত হবে| 10 কারণ তোমরা তোমাদের রক্ষাকর্তা ঈশ্বরকে ভুলে গিয়েছ| ঈশ্বর যে তোমাদের নিরাপদ জায়গা তা তোমরা স্মরণ করছ না|তোমরা অনেক দূরদূরান্ত থেকে খুব ভালো জাতের দ্রাক্ষা এনেছ| কিন্তু এগুলোকে রোপণ করলে গাছগুলো জন্মাবে না| 11 এক দিন তোমরা তোমাদের দ্রাক্ষা গাছগুলোকে রোপণ করবে| এবং তাদের বড় করার চেষ্টা করবে| পরের দিন গাছগুলো বড় হতে আরম্ভ করবে| কিন্তু ফসল তোলার সময়ে তোমরা যখন দ্রাক্ষা তুলতে যাবে, দেখবে যে সব গাছগুলো মরে গেছে| কোন রোগ সব গাছকে মেরে ফেলবে| 12 অনেক লোকের কান্নার রোল শোন| তারা সমুদ্রের ঢেউযের মতো, সমুদ্র জলোচ্ছাসের শব্দের মতো গর্জন করছে| 13 লোকরা এই ঢেউযের মতো গর্জন করবে| কিন্তু ঈশ্বর তাদের ধমক দেবেন| তাই তারা দূরে পালাবে| তারা ঝড়ের সামনে ভূষির মতো কিংবা ঝড়ের মুখে ছোট শিকড়ওযালা গাছের মতো উড়ে যাবে| 14 ঐ দিন রাতে লোকরা ভয় পাবে| সকাল হওয়ার আগেই সবাই পালিয়ে যাবে| কোন কিছুই পড়ে থাকবে না| তাই শএুরা কিছুই পাবে না| তারা আমাদের দেশে আসবে| কিন্তু দেশে তখন কিছুই থাকবে না|
1 কূশীয় নদীগুলির দৈর্য়্ঘ বরাবর দেশটির দিকে দেখ| দেশটি পতঙ্গে ভরে গিয়েছে| তুমি তাদের ডানার ভন ভন শব্দ শুনতে পাচ্ছ| 2 ঐ দেশটি ভেলায করে সমুদ্রের ওপারে বার্তাবাহক পাঠাচ্ছে| হে দ্রুতগামী বার্তাবাহকগণ, দীর্ঘকায ও মসৃণত্বকের লোকদের কাছে যাও| সমস্ত জায়গার লোকরা এই দীর্ঘকায এবং মসৃণত্বকের লোকদের ভয় পায়, তারা একটি শক্তিশালী জাতি যারা অন্য জাতিদের পরাজিত করে| তারা একটি দেশে বাস করে যেটি নদীসমূহ দ্বারা বিভক্ত| 3 ঐসব লোকদের সাবধান করে দাও যে তাদের কোন না কোন বিপদ ঘটবে| এই দেশের লোকদের যে বিপদ ঘটবে সারা পৃথিবীর লোক তা দেখতে পাবে| এই সব লম্বা লোকদের কপালে যা ঘটবে তা পৃথিবীর সবাই পর্বতের ওপরে পতাকা ওড়ার দৃশ্যের মতো পরিষ্কার দেখতে পাবে| যুদ্ধের আগে শিঙা ফোঁকার শব্দের মতো পৃথিবীর সবাই পরিষ্কার ভাবে তা শুনতে পাবে| 4 প্রভু বললেন, “যে জায়গা আমার জন্য তৈরী হয়েছে আমি সেখানে থাকব|কিন্তু 5আমি শান্তভাবে এইসব ঘটনা পর্য়বেক্ষণ করব| গ্রীষ্মের এক মনোরম দুপুরে (যে সময়ে এক ফোঁটা বৃষ্টি হয় না অথচ ভোরে শিশির পড়ে|) একটা ভয়ঙ্কর কিছু ঘটবে| এটি ঘটবে ফসল কাটার সময়ের আগে যখন ফুলগুলি ফুটে যাবে এবং নতুন দ্রাক্ষাগুলি মঞ্জরীত হবে এবং বাড়তে থাকবে; কিন্তু তখন শএুরা এসে গাছগুলি কেটে ফেলবে ও দ্রাক্ষা লতাগুলি ছিঁড়ে ফেলবে এবং সেগুলি ছুঁড়ে ফেলে দেবে| 5 6 দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি পর্বতের পাখি এবং বন্য জন্তুদের খাবার জন্য পড়ে থাকবে| গ্রীষ্মকালে পাখিরা দ্রাক্ষা-লতায বাসা বাঁধবে এবং শীতকালে বন্য জন্তুরা দ্রাক্ষা-লতা খাবে|” 7 তখন দীর্ঘকায ও মসৃণত্বকের লোকরা প্রভু সর্বশক্তিমানের জন্য একটি বিশেষ নৈবেদ্য নিয়ে আসবে| সমস্ত জায়গার লোকরা এই দীর্ঘকায, মসৃণত্বকের লোকদের ভয় পায়| একটি ক্ষমতাবান জাতি যারা অন্য দেশসমূহকে পরাস্ত করে, তারা একটি দেশে বাস করে যেটি নদীসমূহ দ্বারা বিভক্ত| এই নৈবেদ্য সিয়োন পর্বতে, প্রভু যেখানে অধিষ্ঠান করেন, সেখানে আনা হবে|
1 মিশর সম্পর্কে বার্তা: দেখো! প্রভু একটা দ্রুত ধাবমান মেঘে চড়ে আসছেন| তিনি মিশরে যাবেন এবং তাঁর এই আগমনে সেখানকার মূর্ত্তিরা ভয়ে কাঁপবে| সাধারণতঃ মিশরবাসীরা সাহসী কিন্তু প্রভুর আগমনে তাদের সাহস গরম মোমের মতো গলে যাবে| 2 ঈশ্বর বলেন: “আমি মিশরের লোকদের নিজেদের মধ্যে মারামারি করাব| ভাই লড়বে ভাইযের বিরুদ্ধে| প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে প্রতিবেশী| এক শহর অন্য শহরের বিরুদ্ধে| এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে| 3 লোকরা বিভ্রান্ত হবে| লোকরা তাদের ভ্রান্ত দেবতা ও জ্ঞানী লোকদের দরবারে হাজির হয়ে জানতে চাইবে তাদের কি করা উচিত্| লোকরা যাদুকরের কাছেও জিজ্ঞাসা করবে| কিন্তু কারোর উপদেশই কার্য়করী হবে না|” 4 গুরু, সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “মিশরকে আমি এক কঠোর প্রভুর হাতে দেব| এক শক্তিশালী রাজা লোকদের শাসন করবে| 5 নীলনদ এমশঃ শুকিয়ে আসবে| সমুদ্র থেকে জল চলে যাবে| 6 সমস্ত নদীর জল দুর্গন্ধে ভরে যাবে| মিশরের খালগুলি এমশঃ শুকিয়ে যাবে এবং জলহীন হয়ে পড়বে| সমস্ত জলজ উদ্ভিদগুলিতে পচন ধরবে| 7 নীলনদের তীর ধরে যেসব ছোট গাছপালা আছে সেগুলো মরে যাবে এবং উড়ে যাবে| এমন কি নীলনদ যেখানে সবচেয়ে বেশী বিস্তৃত, সেখানকার গাছপালাও মরে যাবে| 8 “নীলনদ থেকে যে সমস্ত জেলেরা মাছ ধরত তারা এমশঃ বিষণ্ন হবে এবং কাঁদবে| যারা নীলনদের ওপর জাল বিছিযে জীবিকা নির্বাহ করত তারা দুর্বল হয়ে যাবে| 9 যে সমস্ত মানুষ কাপড় তৈরী করে তারাও ভীষণ বিষণ্ন| কারণ কাপড় তৈরীর প্রয়োজনীয় ফ্লা) (এক রকমের গাছ) আর নদীর পাড়ে জন্মাচ্ছে না| 10 নদীর জল ধরে রাখার জন্য যারা বাঁধ তৈরী করতো, তারাও কাজ হারিযে বিষণ্ন হবে| 11 “সোযন শহরের নেতারা বোকা| ফরৌণের ‘বিজ্ঞ পণ্ডিতরা’ ভুল উপদেশ দিয়েছে| ঐ নেতারা বলেছেন যে তাঁরা জ্ঞানী ও রাজারই বংশধর| কিন্তু যতটা বিজ্ঞ বলে তাঁরা নিজেদের ভাবছেন ততটা তাঁরা নন|” 12 মিশর, তোমার জ্ঞানী মানুষরা কোথায়? ঐ জ্ঞানী বিজ্ঞ ব্যক্তিদের জানতে হবে যে সর্বশক্তিমান প্রভু মিশরের জন্য কি পরিকল্পনা করেছেন| কি ঘটবে তা জেনে নিয়ে তা তাদের অন্যদের জানানো উচিত্| 13 সোযন শহরের নেতাদের বোকা বানানো হয়েছে| নোফের নেতাদের ভ্রান্ত জিনিষ বিশ্বাস করিযে ঠকানো হয়েছে| তাই তারা মিশরকে ভুল পথে নিয়ে যায়| 14 প্রভু, নেতাদের বিভ্রান্ত করেছেন| তারা রাস্তা ভুলেছে এবং মিশরকে ভুল পথে চালিত করেছে| নেতাদের সব কাজই ভুলে ভরা| তারা, মাটিতে তাদের বমির ওপর মাতালের মত টল্মল করে হেঁটে বেড়ায| 15 নেতারা মিশরের জন্য কিছুই করতে পারবে না| এই নেতারা হচ্ছে “মাথা এবং লেজ|” তারা হচ্ছে “গাছের মাথা এবং বৃন্তসমূহ|” 16 মিশরীয়রা সেই সময় ভীত-সন্ত্রস্ত মেয়েদের মতো হয়ে পড়বে| প্রভু সর্বশক্তিমানের আগমনে তারা ভয় পাবে| প্রভু লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তার বাহু প্রসারিত করবেন এবং তারা ভীত হবে| 17 যিহূদা হবে এমন এক জায়গা যা মিশরের সব মানুষের কাছেই আতঙ্ক স্বরূপ| মিশরের কোন মানুষ যিহূদার নাম শুনলেই সে হঠাত্ই আতঙ্কিত হয়ে পড়বে| প্রভু সর্বশক্তিমান এই ভাবেই মিশরীয়দের শাস্তি দেবেন বলে পরিকল্পনা করেছেন| 18 ঐ সময়, মিশরের পাঁচটি শহরের লোকরা কনান ভাষায় (ইহুদীদের ভাষা) কথা বলবে| ঐ পাঁচটি শহরের একটি হবে “ধ্বংসের শহর|”শহরের লোকরা প্রভু সর্বশক্তিমানকে মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করবে| 19 ঐ সময় মিশরের মাঝখানে প্রভুর এক বেদী থাকবে| প্রভুকে সন্মান দেখানোর জন্য মিশরের সীমানায একটি স্মৃতি স্তম্ভ থাকবে| 20 এগুলি থাকার অর্থ সর্বশক্তিমান প্রভু কত ক্ষমতাধর তা দেখানো| প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়লেই সাহায্য মিলবে| প্রভু লোকদের কাছে একজন ত্রাণকর্ত্তা পাঠাবেন যে তাদের প্রতিরক্ষা করবে এবং তাদের পীড়নকারী লোকদের হাত থেকে উদ্ধার করবে| 21 মিশরের লোকরা সে সময় সত্যি সত্যিই প্রভুকে জানবে| তারা ঈশ্বরকে ভালোবাসবে| লোকরা ঈশ্বরের সেবা করবে এবং অনেক পশুবলি দেবে| তারা প্রভুর কাছে প্রতিশ্রুতি করবে এবং সেই প্রতিশ্রুতি পালন করবে| 22 প্রভু মিশরের লোকদের শাস্তি দেবেন এবং তারপর তাদের ক্ষমা করবেন| পরে ঐ লোকরা প্রভুর কাছে ফিরে আসবে| প্রভু প্রত্যেকের প্রার্থনা শুনবেন এবং তাদের ক্ষমা করবেন| 23 সেই সময়, মিশর থেকে অশূর পর্য়ন্ত একটা রাজপথ থাকবে| তখন অশূরের লোকরা ঐ পথেই মিশরে যাবে এবং মিশরের লোকরা ঐ রাজপথ ধরেই অশূরে আসবে| মিশর ও অশূরের লোকেরা মিলে মিশে কাজ করবে| 24 সে সময় ইস্রায়েল, মিশর ও অশূর মিলিত হবে এবং দেশকে নিয়ন্ত্রণ করবে| এটা দেশের পক্ষে কল্যাণকর হবে| 25 প্রভু সর্বশক্তিমান ঐ সম্মিলিত দেশগুলিকে আশীর্বাদ করবেন| তিনি বলবেন, “মিশর তুমি আমার লোক| অশূর আমি তোমাকে সৃষ্টি করেছি| ইস্রায়েল, তুমি আমার| তোমরা প্রত্যেকেই আমার আশীর্বাদপুষ্ট!”
1 সর্গোন ছিলেন অশূরের রাজা| সর্গোন তাঁর সেনাপতি তর্ত্তনকে অস্দোদ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠান| তর্ত্তন সেখানে গিয়ে শহরটি দখল করে নেন| 2 সেই সময় প্রভু আমোসের পুত্র যিশাইয়ের মাধ্যমে কথাবার্তা বলেছিলেন| প্রভু বলেন, “যাও, তোমার কোমর থেকে দুঃখের কাপড় সরাও| পা থেকে জুতো খুলে ফেল|” যিশাইয় প্রভুর আদেশ পালন করল| খালি পায়ে, খালি গায়ে যিশাইয় চারদিকে ঘুরে বেড়াল| 3 তারপর প্রভু বললেন, “যিশাইয় তিন বছর ধরে খালি পায়ে খালি গায়ে ঘুরে বেড়িযেছে| এটা মিশর এবং কূশ দেশের কাছে একটা নিদর্শন| 4 অশূরের রাজা মিশর ও কূশদেশকে পরাজিত করবে| অশূররা বন্দীদের তাদের দেশ থেকে ধরে নিয়ে যাবে| বৃদ্ধ এবং য়ুবা বন্দীদের খালি পায়ে এবং পোশাক-আশাক না পরিযে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে| তারা সম্পূর্ণ উলঙ্গ থাকবে| মিশরের লোকরা লজ্জিত হবে| 5 তারা ভীত এবং হতাশ হবে কারণ তারা কূশ দেশের কাছে সাহায্য আশা করেছিল এবং মিশর দেশের মহিমায তাদের আস্থা ছিল|” 6 সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী লোকরা বলবে, “আমরা ঐ দেশগুলির কাছ থেকে সাহায্য পাবার ভরসা করেছিলাম| আমরা ওদের কাছে ছুটে গিয়েছিলাম যাতে অশূরের রাজার হাত থেকে তারা আমাদের রক্ষা করে| কিন্তু ওদের দিকে তাকাও| ওরাও বন্দী| ওদের দেশ দখল হয়ে গেছে| তাহলে আমরা কি ভাবে মুক্তি পাব?”
1 সমুদ্রের তীরবর্তী মরুভূমিসম্পর্কে দুঃখ বার্তা: মরুভূমি থেকে কিছু বিপদ আসছে| যিহূদার দক্ষিণে মরু অঞ্চল নেগেভ থেকে একটি বাতাসের ঝটকার মতো এটা আসছে| এটা ভয়ঙ্কর একটা দেশ থেকে আসছে| 2 আমি দেখছি খুব ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটবে| আমি দেখছি বিশ্বাসঘাতকরা তোমার বিরুদ্ধে| আমি দেখছি লোকরা তোমার সম্পদ লুঠ করে নিচ্ছে| এলম যাও এবং ঐ লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করো| মাদিযা শহরের চারদিকে তোমার সৈন্যদের মোতাযেন কর এবং ওদের হারাও| আমি শহরের সমস্ত খারাপ জিনিসকে ধ্বংস করব| 3 আমি ঐসব ভয়ঙ্কর জিনিস দেখেছি| এখন আমি ভীত-সন্ত্রস্ত| ভয়ের কারণে পাকস্থলীতে ব্যথা পাচ্ছি| ঐ ব্যথা প্রসব যন্ত্রণার মতো| যা কিছু শুনছি তাই আমাকে ভয় পাইযে দিচ্ছে| যা কিছু দেখছি তাতে আমি ভয়ে কাঁপছি| 4 আমি উদ্বিগ্ন, আমি ভয়ে কাঁপছি| এখন আমার মনোরম সন্ধ্যা ভয়ের রাতে পর্য়বসিত| 5 লোকরা ভাবছে সব কিছুই ভাল| তারা বলছে, “খাবার ও পান করার জন্য টেবিল প্রস্তুত কর!” ঠিক ঐ সময় সৈন্যরা বলছে, “রক্ষীদের নিয়োগ কর| আধিকারিকগণ উঠে পড় এবং তোমাদের বর্মকে পালিশ কর! 6 আমার প্রভু আমায় বললেন, “শহরে নজরদারি চালানোর জন্য একজন মানুষ খুঁজে আনো| ঐ লোকটি যা যা দেখেছে তা অবশ্যই আমাকে জানাবে| 7 যদি ঐ রক্ষী অশ্বারোহী সৈন্যদের, গাধা ও উটের সারিকে এগিয়ে আসতে দেখে তাহলে খুব সন্তর্পনে ওদের কথাবার্তা শুনতে চেষ্টা করবে|” 8 তারপর একদিন, সে সতর্ক বাণী দেবে: “সিংহ!” “প্রভু, প্রতিদিন আমি পর্য়বেক্ষণ কেন্দ্র থেকে লক্ষ্য রাখি| প্রতি রাতে আমি আমার পাহারা দেবার জায়গায় দাঁড়িয়ে পাহারা দিই|” 9 কিন্তু ওরা আসছে| আমি অশ্বারোহী সৈন্য এবং লোকদের সারি দেখছি|তখন এক বার্তাবাহক বলল, “বাবিলের পতন হয়েছে| বাবিল মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে| তার সমস্ত ভ্রান্ত দেবতার মূর্ত্তিগুলি মাটিতে আছড়ে টুকরো টুকরো করে ভাঙা হয়েছে|” 10 যিশাইয় বললেন, “হে আমার লোকরা, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে আমি যা যা শুনেছিলাম তা সবই তোমাদের জানিয়েছি| খামারে শস্য মাড়াই করার মতো তোমাদেরও মাড়ানো হবে| 11 দূমা সম্পর্কে বার্তা:সেযীর (এদম) থেকে কেউ আমায় ডাকল| সে বলল, “প্রহরী রাতের আর কতটুকু বাকি? আর কতক্ষণ এই অন্ধকার থাকবে?” 12 প্রহরী উত্তর দিল, “সকাল আসছে| কিন্তু তারপর আবার রাত আসবে| এরপরও যদি তোমার কিছু জিজ্ঞাস্য থাকে, তাহলে ফিরে এসো| (তখন আবার জিজ্ঞাসা) করবে|” 13 আরব সম্বন্ধে দুঃখের বার্তা:দদান থেকে এক দল ব্যবসাযী তাদের ব্যবসার জিনিসপত্র পশুর টানা গাড়িতে (ক্য়ারাভান) চাপিয়ে নিয়ে আসছে| আরবের মরুভূমিতে কিছু গাছের কাছে তারা রাত কাটাল| 14 তারা কিছু তৃষ্ণার্ত ভ্রমণকারীদের জল পান করালো| টেমার লোকরা ঐ ভ্রমণকারীদের খাদ্যও দিল| 15 ঐসব লোক তরবারির নাগাল এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে| তীরের আওতা থেকে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে| বিধ্বংসী যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে তারা পালিয়ে যাচ্ছিল| 16 সদাপ্রভু আমায় বলেছিলেন যে এই সব ঘটবে| প্রভু বলেছিলেন, “এক বছরের মধ্যেই, যে ভাবে একজন ভাড়াটে সহকারী সময় গোনে, কেদরের সমস্ত গৌরব অদৃশ্য হয়ে যাবে| 17 সে সময় শুধু কয়েকজন তীরন্দাজ, কেদরের মহান সৈন্যরা বেঁচে থাকবে|” কারণ প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন!
1 দর্শন উপত্যকাসম্বন্ধে দুঃখের বার্তা:হে লোকরা, তোমাদের কি হয়েছে? তোমার লোকরা কেন ছাদে লুকিয়ে থাকছে? 2 অতীতে এই শহরটা খুব ব্যস্ত শহর ছিল| এই শহর ছিল শব্দমুখর এবং সুখী| কিন্তু এখন সব কিছুর পরিবর্তন হয়েছে| তোমার লোকরা তরবারির আঘাত ছাড়াই নিহত হচ্ছে| যুদ্ধ না করেও মারা পড়েছে| 3 তোমাদের সব নেতারা এক সঙ্গে পালিয়ে গেল| কিন্তু সকলেই আবার বন্দী হয়েছে| নেতারা বন্দী হয়েছে ধনুক ছাড়াই| 4 তাই আমি বলছি, “আমার দিকে তাকিও না| আমাকে কাঁদতে দাও| জেরুশালেম ধ্বংসের কারণে আমার এই কান্না| আমাকে সান্ত্বনা দিতে তোমাদের ছুটে আসতে হবে না|” 5 প্রভু একটা দিন বেছে রেখেছেন| ঐ দিনে জাতিদাঙ্গা হবে এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়বে| লোকেরা দর্শন উপত্যকায় একে অপরকে পদদলিত করবে| শহরের দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলা হবে| উপত্যকার লোকরা পার্বত্য শহরে থাকা লোকদের উদ্দেশ্যে সাহায্যের জন্য চিত্কার করবে| 6 এলমের অশ্বারোহী সৈন্যরা তাদের তীরের ব্যাগ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে যাবে| কীরের লোকরা তাদের বর্ম প্রস্তুত রাখবে| 7 সৈন্যরা তোমার বিশেষ উপত্যকায় জমায়েত হবে| উপত্যকাটি রথ দিয়ে ভরে যাবে| শহরের প্রবেশপথে অশ্বারোহী সৈন্যরা নিজেদের মোতাযেন রাখবে| 8 ঐ সময়ে যিহূদার লোকরা অরণ্যের প্রাসাদে মজুত য়ুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করতে চাইবে|সৈন্যরা যিহূদার প্রাচীর ভেঙে ফেলবে| 9 দাযূদের শহরের প্রাচীরে ফাটল ধরবে এবং তুমি ঐ ফাটলগুলি দেখতে পাবে| তাই তুমি বাড়িঘরগুলি গুনবে এবং ঐ বাড়িগুলির পাথর ব্যবহার করে প্রাচীরের ফাটলে লাগাবে| তুমি জল ধরে রাখার জন্য দুটি প্রাচীরের মাঝখানে একটা জায়গা তৈরি করবে এবং তুমি জল ধরে রাখতে পারবে|তোমরা ঐসব নিজেদের রক্ষা করার জন্য করবে| কিন্তু যে ঈশ্বর সব কিছু সৃষ্টি করেছেন তোমরা সেই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবে না| অনেক দিন আগে যিনি আমাদের জন্য এই সব কিছু করেছেন সেই এক জনকে (ঈশ্বর) তোমরা দেখবে না| 10 11 12 তাই, আমার সদাপ্রভু, সর্বশক্তিমান, লোকদের তাদের মৃত বন্ধুদের জন্য কাঁদতে এবং শোকপ্রকাশ করতে বলবেন| লোকরা তাদের দাড়ি কামিয়ে ফেলবে এবং দুঃখের পোশাক পরবে| 13 কিন্তু দেখ, লোকরা এখন সুখী| তারা আনন্দ করছে| বলছে:গবাদি পশু ও মেষদের মার| আমরা উত্সব করব| তোমরা খাদ্য খাও ও দ্রাক্ষারস পান কর| খাও এবং পান কর কারণ আমরা তো আগামী কাল মরব| 14 প্রভু সর্বশক্তিমান এগুলি আমাকে বললেন এবং আমি তা নিজের কানে শুনলাম: “তোমরা খারাপ কাজ করেছ তাই দোষী সাব্যস্ত হয়েছ এবং আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এই পাপ ক্ষমা করার আগেই তোমরা মারা যাবে|” আমার সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন| 15 আমার সদাপ্রভু, সর্বশক্তিমান আমাকে এই কথাগুলি বলেছিলেন, “শিব্নে নামক এই ভৃত্যের কাছে যাও| ঐ ভৃত্য হল রাজপ্রাসাদের অধ্যক্ষ| 16 ভৃত্যটিকে জিজ্ঞাসা কর ‘এখানে কি করছ? তোমার পরিবারের কেউ কি এখানে সমাহিত হয়েছে? কেন তুমি এখানে কবর খুঁড়ছো?”‘যিশাইয় বললেন, “এই লোকটার দিকে দেখ| সে একটি উঁচু জায়গায় কবর খুঁড়ছে| এই লোকটি পাথর কেটে কেটে নিজের কবর তৈরি করছে| 17 “হে মানুষ, প্রভু তোমায় পিষে মারবেন| প্রভু তোমাকে একটা ছোট গোলায পরিণত করবেন এবং দূরের একটি বিশাল দেশে তোমাকে ছুঁড়ে ফেলবেন এবং সেখানে তুমি মারা যাবে|”প্রভু বললেন, “তুমি তোমার যুদ্ধরথের জন্য খুবই গর্বিত| কিন্তু ঐ দূরবর্তী দেশে নতুন শাসকের কাছে তোমার থেকেও ভাল যুদ্ধরথ থাকবে| তাই তোমার রথ ঐ রাজপ্রাসাদে তেমন গুরুত্ব পাবে না| 18 19 এখানে আমি তোমার গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাধার সৃষ্টি করব| তোমার নতুন মনিব এতে বিরক্ত হয়ে তোমায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে সরিয়ে দেবেন| 20 ঐ সময়, আমি আমার দাস, ইলীয়াকীমকে ডাকব| ইলীয়াকীম হচ্ছে হিল্কিয়ের পুত্র| 21 আর আমি তোমার আলখাল্লাটা নেব এবং ঐ দাসকে তা পরতে দেব| তোমার শাসনদণ্ডটি আমি তার হাতে তুলে দেব এবং সে জেরুশালেম ও যিহূদায় বসবাসকারী লোকদের পিতার মত হবে| 22 “আমি দাযূদের বাড়ির চাবি ঐ মানুষটার গলায় ঝুলিয়ে দেব| যদি সে একটা দরজা খোলে, তাহলে সে দরজা খোলাই থাকবে| কেউই তা বন্ধ করতে সক্ষম হবে না| যদি সে একটা দরজা বন্ধ করে তাহলে ঐ দরজা বন্ধই থাকবে| কেউই তা খুলতে পারবে না| 23 আমি দাসটিকে পেরেকের মতো শক্ত করে গড়ব যাতে শক্ত কাঠের বোর্ডে হাতুড়ির আঘাতে সে অনায়াসে ঢুকতে পারে| ঐ ভৃত্যটি তার পিতার বাড়িতে একটি সম্মানের আসন পাবে| 24 তার পৈতৃক বাড়িতে যত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক বস্তু আছে তার গায়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে| বড়রা এবং ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তার ওপর নির্ভর করবে| ঐসব লোক ছোট্ট থালা এবং বড় জলের বোতলের মত তার গায়ে ঝুলে থাকবে| 25 “সেই সময়, পেরেকটি (শিব্নে) যেটা এখন একটা খুব শক্ত বোর্ডের ওপর হাতুড়ি দিয়ে ঢোকানো হয়েছে, তা দুর্বল হয়ে যাবে এবং পড়ে যাবে| ঐ পেরেকটি মাটিতে পড়বে এবং ওর সঙ্গে ঝোলানো সমস্ত বস্তু আছড়ে পড়ে ধ্বংস হবে| এই হল তার (জেরুশালেম) সম্বন্ধে বার্তা, কারণ প্রভু এ কথা বলেছেন|
1 সোর সম্বন্ধে দুঃখের বার্তা: তর্শীশের জাহাজসমূহ, দুঃখ কর এবং কাঁদো! কেননা তোমাদের বন্দরটি ধ্বংস হয়েছে| (কিত্তীম দেশ থেকে আসার পথে জাহাজটির লোকদের এই খবর জানানো হয়েছিল|) 2 সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী লোকদের বিরত হওয়া ও বিষণ্ন হওয়া উচিত্| সোর ছিল সমুদ্র উপকুলবর্তী “সীদোনের বণিক|” সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ার দরুণ এই শহরটি তার ব্যবসাযীদের জলপথে ব্যবসা করতে পাঠায় এবং ধনসম্পদ দিয়ে দেশটিকে ভরে দিয়েছিল| 3 শস্যের সন্ধানে এখানকার লোকরা জলপথে ভ্রমণ করে| নীলনদের ধারে জন্মানো শস্য সোরের লোকরা কিনে এনে অন্য জাতির কাছে তা বিক্রি করে| 4 সীদোন, তোমার ভীষণ বিষণ্ন হওয়া উচিত্, কারণ সমুদ্র ও সমুদ্রের দুর্গ বলছে:আমার কোন সন্তান নেই| গর্ভ যন্ত্রণা কি তা আমি বুঝিনি| আমি কোন শিশুর জন্ম দিই নি| আমি তরুণ তরুণীদের গড়ে তুলতেও সাহায্য করিনি| 5 মিশর, সোর সম্বন্ধে এমন সংবাদ পাবে| এই খবর মিশরকে দারুণ শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ফেলবে| 6 মালবাহী জাহাজগুলিকে তর্শীশে ফিরে আসতেই হবে| সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী লোকদের বিলাপ করতে হবে| 7 অতীতে সোর শহর আনন্দ, উত্সবে মেতেছে| প্রথম থেকেই শহরটি বড় হয়ে চলেছে| বসতি স্থাপনের জন্য শহরটির নাগরিকরা দূর দূরান্তে ভ্রমণ করেছে| ঐ শহরে বাস করতে দূর দূরান্ত থেকে লোকরা এসেছে| 8 সোর শহরে অনেক নেতা তৈরী হয়েছে| শহরের বণিকরা যেন রাজপুত্র| এখানকার যে সব লোকরা নানা জিনিসপত্র কেনাবেচা করে তারা সব জায়গায় সম্মান পেয়েছে| সুতরাং সোরের বিরুদ্ধে কে পরিকল্পনা করেছিল? 9 প্রভু সর্বশক্তিমানই এই পরিকল্পনার নেপথ্য কারিগর| তিনি তাদের গুরুত্বহীন করার সিদ্ধান্ত নেন| 10 তর্শীশ থেকে আসা মালবাহী জাহাজগুলি স্বদেশে ফিরে যাও| সমুদ্রটাকে ছোট নদী মনে করে পেরিযে যাও| কোন ব্যক্তিই এখন তোমায় থামাবে না| 11 সমুদ্রের ওপরেও প্রভু তাঁর বাহু প্রসারিত করেছেন| সোরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অন্যান্য রাজ্যগুলিকে তিনি একত্রিত করছেন| প্রভু কনানকে তার নিরাপদ জায়গা সোরকে ধ্বংস করার আদেশ দিয়েছেন| 12 প্রভু বলেন, “হে সীদোনের কুমারী কন্যা, তুমি ধ্বংস হবে! তোমার আনন্দ করবার আর কোন সুযোগ থাকবে না|” কিন্তু সোরের লোকরা বলছে, “সাইপ্রাস আমাদের সাহায্য করবে|” কিন্তু যদি তুমি সমুদ্র পেরিযে সাইপ্রাসে যাও, তাহলে বিশ্রাম করার কোন জায়গা তুমি খুঁজে পাবে না| 13 তাই সোরের লোকরা বলছে, “বাবিলের লোকরা আমাদের সাহায্য করবে|” কিন্তু কল্দীযদের দেশের দিকে তাকাও| বাবিল এখন আর দেশ নয়| অশূররা বাবিলে আক্রমণ চালিযে শহরের চারিদিকে দুর্গ তৈরী করেছে| সৈন্যরা সুন্দর সুন্দর বাড়িঘর থেকে সব জিনিসপত্র লুঠ করে নিয়েছে| অশূররা বাবিলকে একেবারে বন্যপ্রাণীদের থাকার জায়গায় পরিণত করেছে| তারা বাবিলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে| 14 সুতরাং তর্শীশ থেকে আসা মালবাহী জাহাজগুলি দুঃখিত হও| তোমার নিরাপদ জায়গা (সোর) ধ্বংস হবে| 15 লোকরা প্রায 70 বছর পর্য়ন্ত সোরকে ভুলে থাকবে| (এটা কোন রাজার রাজত্ব কালের সীমা|)70 বছর পর সোরের অবস্থা ঠিক এই গানের মধ্যে বেশ্যার মত হবে: 16 ওহে বেশ্যা, পুরুষরা তোমায় ভুলে গেছে| তুমি বীণা নিয়ে শহর পরিক্রমায় যাও| মধুর তালে বাজাও| সুন্দর করে গান গাও| তোমার গান মাঝে মাঝে গাও| তাহলে লোকরা হয়তো তোমাকে আবার চিনতে পারবে| 17 সত্তর বছর পর, প্রভু সোরকে স্মরণ করবেন এবং তাকে তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন| সোর আবার আগের মতো ব্যবসা শুরু করবে| সোর পৃথিবীর সমস্ত জাতির সঙ্গে বেশ্যাবৃত্তিতে প্রশ্রয দেওয়া একটি বেশ্যার মত হবে| 18 কিন্তু সে উপার্জনের টাকাপয়সা ধরে রাখতে পারবে না| ব্যবসার লাভের টাকা প্রভুর জন্য সঞ্চিত হবে| যারা প্রভুর সেবা করবে তারাই লভ্য়াংশের টাকা পাবে| সুতরাং প্রভুর দাসরা সুন্দর জামাকাপড় পরবে এবং আশ মিটিযে খাওয়াদাওযা করবে|
1 দেখো! প্রভু এই দেশকে ধ্বংস করবেন এবং এই দেশ থেকে তিনি সব কিছু ধুয়ে মুছে দেশটিকে পরিষ্কার করবেন| তিনি দেশের লোকদের সুদূরে তাড়িয়ে দেবেন| 2 সেই সময়, সাধারণ লোকরা এবং যাজকগণ সমতুল্য হবে| এীতদাস ও মনিব, দাসী ও কর্ত্রী, এতো ও বিক্রিতো, 3 ঋণগ্রাহক ও ঋণদাতা সকলে সমান হবে| সমস্ত লোককে দেশের বাইরে যেতে বাধ্য করা হবে| সমস্ত সম্পদ নিয়ে নেওয়া হবে| কারণ প্রভুর আদেশেই ঐসব ঘটনা ঘটবে| 4 দেশটি শূন্য ও দুর্বল হয়ে পড়বে| এই দেশের মহান নেতারা ক্ষমতাহীন হবেন| 5 এই দেশের লোকরাই দেশের মাটিকে নোংরা করে তুলেছে| কি করে এটা ঘটল? ঈশ্বরের শিক্ষার বিরুদ্ধে লোকরা ভুল কাজ করেছিল| লোকরা ঈশ্বরের বিধি মানেনি| অনেক দিন আগে লোকরা ঈশ্বরের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল| কিন্তু সেই সব লোকরাই ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের চুক্তি ভঙ্গ করেছিল| 6 এই দেশের লোকরা তাদের ভুল কাজের জন্য দোষী ছিল| তাই এই দেশকে ধ্বংস করার জন্য ঈশ্বর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ| লোকদের শাস্তি দেওয়া হবে| শুধুমাত্র কিছু লোক বেঁচে থাকবে| 7 দ্রাক্ষা ক্ষেত মৃতপ্রায| নতুন দ্রাক্ষারস অপেয| অতীতে মানুষ সুখী ছিল| কিন্তু তারা এখন দুঃখী| 8 লোকরা তাদের আনন্দ প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে| সমস্ত সুন্দর শব্দ থেমে গিয়েছে| খঞ্জর এবং বীণা থেকে নির্গত মধুর সঙ্গীত থেমে গিয়েছে| দ্রাক্ষারস পানের সময় লোকরা আর আনন্দের গান গায না| অনুগ্র সুরার স্বাদ এখন লোকদের তেতো লাগে| 9 10 এই শহর চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে| প্রতিটি বাড়ী বন্ধ, তাই কেউ তার নিজের বাড়ীতে ঢুকতে পারছে না| 11 এখন লোকরা হাটে বাজারে দ্রাক্ষারসের খোঁজ করছে| কিন্তু সমস্ত সুখ উবে গেছে| আনন্দ চলে গেছে সহস্র য়োজন দূরে| 12 শহরটি ধ্বংস হয়ে পড়ে রয়েছে| এমনকি ফটকগুলিও চূর্ণ-বিচূর্ণ| 13 শস্য সংগ্রহের পরে জলপাই গাছে যেমন গুটিকতক জলপাই পড়ে থাকে ঠিক তেমনি অনেকগুলি জাতির মধ্যে এই দেশও একাকি পড়ে থাকবে| 14 বেঁচে যাওয়া লোকরা চিত্কার করতে শুরু করবে| তাদের এই চিত্কার সমুদ্রের গর্জনের থেকেও বেশী হবে| প্রভুর মহানুভবতায তারা সুখী হবে| 15 সেই সব লোকরা বলবে, “প্রাচ্য়ের মানুষরা প্রভুর প্রশংসা কর! দূর দেশের মানুষরা প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে প্রশংসা কর|” 16 পৃথিবীর সমস্ত প্রান্ত থেকে আমরা প্রশংসা গীত শুনব| লোকরা গাইবে: “ধার্ম্মিকজনটি, মহিমান্বিত হউন|” কিন্তু আমি বলি, “আমি মারা যাচ্ছি| আমার পক্ষে সব কিছু ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে| বিশ্বাসঘাতকরা মানুষের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করছে| 17 এই দেশের অধিবাসীদের বিপদ আমি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি| তাদের জন্য পেতে রাখা ফাঁদ, গর্ত এবং ভয় আমি দেখতে পাচ্ছি| 18 লোকরা তাদের বিপদের কথা শুনে ভীত হবে| কিছু লোক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে কিন্তু তারা গর্তে পড়ে গিয়ে ফাঁদে বন্দী হবে| তাদের মধ্যে কয়েক জন গর্ত থেকে উঠে আসবে কিন্তু তারা অন্য ফাঁদে ধরা পড়বে|” আকাশে বাঁধের দরজা খুলে যাবে এবং প্লাবন হবে| পৃথিবীর ভিতগুলো নড়ে উঠবে| 19 ভূমিকম্প হবে| পৃথিবী ফেটে চৌচির হয়ে যাবে| 20 এই পৃথিবী পাপে ভারাএান্ত| তাই তা ভারের তলায় চাপা পড়বে| জীর্ণ বাড়ির মতো তা কেঁপে উঠবে, মত্ত মানুষের মতো পড়ে যাবে| পৃথিবী পড়ে গেছে এবং আর কখনও উঠে দাঁড়াবে না| 21 সেই সময়ই প্রভু তাঁর বিচার শুরু করবেন| তিনি স্বর্গের স্বর্গীয সেনাদেরএবং পৃথিবীর পার্থিব রাজাদের বিচার করবেন| 22 তখন বহু মানুষ একত্রিত হবে| তাদের মধ্যে কেউ আছে ভূগর্ভস্থ কয়েদে বদ্ধ| কেউ আছে কারাগারে| কিন্তু অবশেষে, অনেক দিন পরে তাদের সকলের বিচার হবে| 23 জেরুশালেমের সিয়োন পর্বতে প্রভু রাজার মত শাসন করবেন| গণ্যমান্য লোকদের উপস্থিতিতে তাঁর উজ্জ্বল মহিমা প্রকাশিত হবে| তাঁর মহিমা এত উজ্জল হবে যে তা দেখে চাঁদ বিহবল হবে এবং সূর্য় লজ্জা পাবে|
1 প্রভু, আপনিই আমার ঈশ্বর| আপনাকে আমি সম্মান করি এবং আপনার নামের প্রশংসা করি| আপনি বিস্ময সৃষ্টি করেছেন| বহুদিন আগে আপনি যা যা বলেছিলেন তা বর্ণে বর্ণে সত্যে পরিণত হয়েছে| আপনি যা যা ঘটার কথা বলেছিলেন ঠিক তাই তাই ঘটেছে| 2 আপনি শহর ধ্বংস করেছেন| যে শহর ছিল শক্তিশালী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা তা এখন ধ্বংসস্তূপ মাত্র| বিদেশী প্রাসাদ সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| তা আর কোন দিনও নির্মাণ করা যাবে না| 3 শক্তিমান দেশগুলি আপনাকে শ্রদ্ধা করবে, সম্মান জানাবে| শক্তিশালী শহরের ক্ষমতাবান লোকরা আপনাকে ভয় পাবে এবং সম্মান করবে| 4 প্রভু আপনিই দরিদ্রদের কাছে এক নিরাপদ আশ্রয়| এদের পরাজিত করতে প্রভুত সমস্যা শুরু হবে| কিন্তু আপনি তাদের রক্ষা করবেন| প্রভু, আপনি লোকদের কাছে বন্যা ও দাবদাহ থেকে রক্ষা পাবার মতো সুরক্ষিত গৃহ| ভয়ঙ্কর ঝড় বৃষ্টির মতো সংকটসমূহ আসবে এবং দেওয়ালে ধাক্কা মারবে, কিন্তু গৃহের ভেতরের লোকরা আঘাত পাবে না| 5 শএুরা এসে চিত্কার চেঁচামেচি গোলমাল শুরু করবে| ভয়ঙ্কর শএুরা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে আহবান জানাবে| কিন্তু ঈশ্বর আপনিই তাদের থামিয়ে দেবেন| যদিও গ্রীষ্মে মরুভূমিতে কয়েকটি উদ্ভিদ জন্মায়, পরিশেষে তারা শুকিয়ে যাবে এবং ভূমিতে পতিত হবে| একই ভাবে, আপনিও আপনার শএুদের পরাজিত করবেন এবং তাদের হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করবেন| ঘন মেঘ যেমন গ্রীষ্মের প্রখর উত্তাপকে আটকে দেয় ঠিক সেই ভাবে আপনিও শএুদের ভয়ঙ্কর চিত্কার থামিয়ে দেবেন| 6 সেই সময়, প্রভু সর্বশক্তিমান এই পর্বতের সমস্ত জাতিকে এক ভুরিভোজে আপ্য়াযিত করবেন| সেই ভোজে সেরা খাদ্য ও পানীয় থাকবে| মাংস হবে নরম ও সুস্বাদু| 7 কিন্তু এখন, সমস্ত জাতি ও লোকদের একটি ঘোমটা আচ্ছাদিত করছে| তিনি এই ঘোমটা নষ্ট করে দেবেন| 8 কিন্তু মৃত্যু চিরতরে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| আমার সদাপ্রভু প্রত্যেকটি মুখ থেকে প্রতিটি অশ্রুকণা মুছিযে দেবেন| অতীতে তাঁর সমস্ত অনুরাগী ভক্তরা ছিল বিষণ্ন| কিন্তু ঈশ্বর পৃথিবী থেকে মুছে দেবেন বিষণ্নতা| এ সমস্তই ঘটবে কারণ প্রভু এসব ঘটনার কথাই বলেছেন| 9 সে সময় লোকরা বলবে, “এই তো আমাদের ঈশ্বর| তিনিই সেই যার জন্য আমরা প্রতীক্ষারত| তিনি আমাদের রক্ষা করতে এসেছেন| আমরা আমাদের প্রভুর প্রতীক্ষায আছি| তাই তিনি আমাদের রক্ষা করার সময় আমরা সুখী এবং আনন্দিত হব|” 10 এই পর্বতে প্রভুর শক্তি বিরাজমান| তাই মোয়াব পরাজিত হবে| আবর্জনার স্তূপে খড়ের ওপর দিয়ে হেঁটে যাবার মতো প্রভু শএুদের পদদলিত করবেন| 11 সাঁতার কাটা মানুষের মতো প্রভু তাঁর বাহু প্রসারিত করে লোকে যেসব জিনিস নিয়ে গর্ব করে সেসব জিনিসকে একত্রিত করবেন| তিনি মানুষের তৈরী সুন্দর সুন্দর জিনিসগুলোকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন| 12 প্রভু মানুষের লম্বা প্রাচীর ও নিরাপদ জায়গাগুলিকে ধ্বংস করে মাটির ধূলোয় মিশিয়ে দেবেন|
1 সে সময়ে যিহূদার লোকরা এই গান গাইবে:প্রভু আমাদের পরিত্রাণ দিন| আমাদের একটি শক্তিশালী দুর্ভেদ্য নগর আছে| 2 ফটকগুলি খোলো| এক ন্যায়পরায়ণ জাতি প্রবেশ করবে| এরা ঈশ্বরের সুশিক্ষা মেনে চলে| 3 প্রভু, যেসব লোকরা আপনার ওপর নির্ভর করে এবং আপনার ওপর আস্থা রাখে তাদের প্রকৃত শান্তি দিন| 4 সদা সর্বদা প্রভুকে বিশ্বাস কর| তিনি তোমাদের চিরকালের নিরাপদ আশ্রয়| 5 কিন্তু প্রভু দাম্ভিক শহরকে ধ্বংস করবেন এবং তার অধিবাসীদের শাস্তি দেবেন| দাম্ভিক শহরকে তিনি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলবেন| সেই শহর ধূলোয় মুখ থুবড়ে পড়বে| 6 তখন দীনহীন এবং বিনযী মানুষরা সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর দিয়ে হেঁটে যাবে| 7 সততাই ভাল লোকের বেঁচে থাকার পথ| যা কিছু সরল ও সত্য ভাল লোকরা তাকেই অনুসরণ করে| ঈশ্বর আপনি সেই পথকে মসৃণ করুন যাতে সহজে তাকে মেনে চলা যায়| 8 কিন্তু প্রভু আমরা আপনার বিচারের দিকে তাকিযে রয়েছি| আমাদের আত্মাগুলি আপনাকে এবং আপনার নামকে স্মরণ করতে চাইছে| 9 আমার আত্মা আপনার সাথে রাত্রিবাস করতে চায়| আমার আত্মা প্রতিটি নতুন দিনের ভোরে আপনার সঙ্গে থাকতে চায়| পৃথিবীতে আপনার বিচার যখন নেমে আসবে তখন মানুষ বেঁচে থাকার সঠিক পথ শিখবে| 10 দুষ্ট লোকদের প্রতি যদি আপনি শুধু দয়া দেখান তাহলে তারা কোন কিছু ভাল করতে শিখবে না| এমনকি দুষ্ট লোকরা ভালো পৃথিবীতে বাস করলেও তারা খারাপ কাজ করবে| তারা কখনও প্রভুর মহত্ব দেখতে পায় না| 11 কিন্তু প্রভু সেই সব লোকদের শাস্তি দেবার জন্য প্রস্তুত হোন| নিশ্চিত ভাবেই তারা এটা দেখতে পাবে| তারা কি এটা দেখতে পাবে না? প্রভু, দুষ্টরা দেখুক যে আপনার লোকদের জন্য আপনার যে ভালবাসা তা খুব দৃঢ়| নিশ্চিত ভাবে তারা লজ্জিত হবে| আপনার শএুদের জন্য যে আগুন রাখা আছে তা ওদের পুড়িয়ে শেষ করে ফেলুক| 12 প্রভু, আমরা যে সব কাজ করার চেষ্টা করেছিলাম সে সব কাজে আপনি সফল হয়েছেন| তাই আমাদের শান্তি দিন|ঈশ্বর তাঁর লোকদের নতুন জীবন দেবেন 13 প্রভু আপনিই আমাদের ঈশ্বর| কিন্তু অতীতে আমরা অন্য দেবতাদের মেনে চলতাম| আমরা ছিলাম অন্য মনিবদের| কিন্তু এখন আমরা লোকদের শুধু আপনার নামই স্মরণ করাতে চাই| 14 সেই সব মৃত দেবতারা বেঁচে ওঠে না| সেই সব প্রেতগণ মৃত্যু থেকে আর জেগে ওঠে না| আপনি তাদের ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন| এবং তাদের সম্বন্ধে আমাদের ভাবনা উদ্রেক করবার যা কিছু তা সবই আপনি ধ্বংস করেছেন| 15 হে প্রভু, এই জাতিতে আরো যোগ কর| এতে যোগ কর এবং সম্মানিত হও| দেশটির সর্বদিকের সীমা বৃদ্ধি কর| 16 প্রভু, লোকে যখন বিপদে পড়ে, তখন আপনাকে স্মরণ করে| আপনি যখন তাদের শাস্তি দেন, তখন তারা আপনার কাছে নীরব প্রার্থনা করে| 17 ঠিক যেমন একটি গর্ভবতী মহিলা জন্ম দিতে যাচ্ছে এবং প্রসব যন্ত্রনায় চিত্কার করে কাঁদে, তেমনি, হে প্রভু, আমরা আপনার সামনে এসেছি| 18 একই ভাবে, আমাদের যন্ত্রণা আছে এবং আমরা জন্ম দিই, কিন্তু শুধুই বাতাস| আমরা পৃথিবীর জন্য নতুন মানুষ তৈরী করতে পারি না| আমরা দেশের জন্য মুক্তি আনতে পারি না| 19 কিন্তু প্রভু বলেন, “তোমাদের লোকরা মারা গিয়েছে, তবে তারা আবার বেঁচে উঠবে| আমার মানুষদের মৃতদেহগুলি মৃত্যু থেকে জেগে উঠবে| মৃত মানুষরা মাটিতে উঠে দাঁড়াবে এবং সুখী হবে| তোমাদের আচ্ছাদিত শিশিরসমূহ নতুন দিনের আলোর মতো ঝলমল করবে| এর অর্থ এই- নতুন সময় আসছে যখন পৃথিবী মৃত মানুষদের মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটাবে|” 20 আমার লোকরা, তোমরা তোমাদের ঘরের ভেতরে যাও| দরজা বন্ধ কর| ক্ষণিকের জন্য লুকিয়ে ঘরে থাক| ততক্ষণ পর্য়ন্ত লুকাও যতক্ষণ না ঈশ্বরের রোধ শেষ হয়| 21 পৃথিবীর লোকদের কুকর্মের বিচার করতে প্রভু জেরুশালেমের মন্দির ছেড়ে চলে যাবেন| পৃথিবী নিহত লোকদের রক্ত প্রকাশিত করবে| পৃথিবী আর মৃত মানুষদের আচ্ছাদিত করবে না|
1 সেই সময় প্রভু তাঁর শএুদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করবেন| তিনি লিবিযাথন, বাঁকা সাপটিকে শাস্তি দেবেন| ঐ প্য়াঁচানো সাপটিকে তাঁর বিরাট এবং শক্তিশালী তরবারি দিয়ে শাস্তি দেবেন| এবং তিনি ঐ সামুদ্রিক দৈত্যকে হত্যা করবেন| 2 সে সময়, একটি মনোরম দ্রাক্ষাক্ষেত থাকবে| সেখানকার জমি তৈরীর কাজ শুরু কর| 3 “আমি, প্রভু, সেই বাগানে ঠিক সময়ে জল দেব| দিন রাত্রি পাহারা দেব, তার যত্ন নেব| কেউ সেই বাগানের ক্ষতি করতে পারবে না| 4 আমি রুদ্ধ নই, কিন্তু যুদ্ধ করবার জন্য কেউ একটি কাঁটাঝোপের বেড়া তৈরী করবার চেষ্টা করুক, আমি তার ওপরে মাড়িয়ে এগিয়ে যাব এবং তাকে পুড়িয়ে ফেলব| 5 তবে কেউ যদি নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য আমার কাছে আসে, তবে তাকে আসতে দাও| এবং আমার শান্তি তাকে পেতে দাও| 6 লোকরা আমার কাছে আসবে| সেই সব লোকরা যাকোবকে দৃঢ়মূল বৃক্ষের মতো শক্তিশালী হতে সাহায্য করবে| তারা উদ্ভিদের ফুটে ওঠার মতো ইস্রায়েলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে| তখন দেশটি গাছের ফলের মতো ইস্রায়েলের শিশুতে ভরে যাবে|” 7 প্রভু কি ভাবে তার লোকদের শাস্তি দেবেন? অতীতে শএুরা লোকদের আঘাত করেছিল| প্রভু কি একই উপায়ে তাদের আঘাত করবেন? অতীতে অনেক লোককে হত্যা করা হয়েছিল| প্রভু কি একই ভাবে অনেক লোককে হত্যা করবেন? 8 ইস্রায়েলকে দূরে সরিয়ে দিয়ে ঈশ্বর তার বিরুদ্ধে মামলা দাযের করবেন| তিনি তাকে তাঁর ঝোড়ো বাতাস দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক সেই দিনের মত যখন পূবের বাতাস বয| 9 যাকোবের দোষকে কি ভাবে ক্ষমা করা হবে? তার পাপ দূরীভূত হওয়ার জন্য কি ঘটবে? এইগুলি ঘটবে: বেদীর পাথরগুলি চূর্ণ হয়ে ধূলোয পরিণত হবে| মূর্ত্তিগুলি ও বেদীগুলি ধ্বংস করা হবে| 10 সেই সময় বিশাল শহরটি হবে পরিত্যক্ত| এটার অবস্থা হবে মরুভূমির মতো| সমস্ত মানুষ ছুটে পালাবে| শহরটি হবে চারণভূমির মত মুক্ত| সেখানে গবাদি পশুরা ঘাস খাবে| তারা দ্রাক্ষা গাছ থেকে পাতা ছিঁড়ে খাবে| 11 দ্রাক্ষা ক্ষেত শুষ্ক হয়ে যাবে| তার শাখাগুলি ভেঙে পড়বে| মহিলারা সেগুলিকে আগুন জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করবে|লোকে বুঝতে চাইবে না, তাই প্রভু, তাদের সৃষ্টিকর্তা তাদের স্বস্তি দেবেন না, তাদের প্রতি দয়ালুও হবেন না| 12 সেই সময় প্রভু তার লোকদের অন্যদের থেকে আলাদা করতে শুরু করবেন| ফরাত্ নদীর কিনারা থেকে তিনি শুরু করবেন|তিনি তাঁর লোকদের এই নদী থেকে মিশরের নদী পর্য়ন্ত একত্রিত করবেন| 13 ইস্রায়েলের লোকরা এক এক করে সংঘবদ্ধ হবে| অশূরের হাতে আমার অনেক লোক হারিযে গেছে| আমার কিছু লোক মিশরে পালিয়ে গেছে| কিন্তু সেই সময়ে বেজে উঠবে এক দারুন তূর্য়ধ্বনি| এবং সেই সব লোকরা জেরুশালেমে ফিরে আসবে| তারা সেই পবিত্র পর্বতের ওপর প্রভুর সামনে নতজানু হবে|
1 শমরিয়ার দিকে তাকাও! ইফ্রযিমের মাতাল মানুষ সেই শহরের জন্য গর্বিত, যে শহর উর্বর উপত্যকা বেষ্টিত পাহাড়ের ওপর অবস্থিত| শমরিয়ার লোকরা মনে করে তাদের শহর ফুলের সুন্দর মুকুটের মত| কিন্তু তারা দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হয়ে রয়েছে| এবং এই “সুন্দর মুকুট” আসলে একটি মৃতপ্রায গাছের মতো| 2 দেখ, আমার প্রভুর একটি লোক আছে যে শক্তিশালী ও সাহসী| সেই লোকটি শিলাবৃষ্টির ঝড়ের মত দেশের ভেতরে আসবে| তিনি ঝড়ের মতো এদেশে আসবেন| তিনি হবেন বানভাসি দেশে জলে ভরা খরস্রোতা নদীর মতো| তিনি সেই মুকুটকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন| 3 ইফ্রযিমের মাতাল মানুষরা তাদের “সুন্দর মুকুটের” জন্য গর্বিত| কিন্তু তাদের শহর পদদলিত হবে| 4 সেই শহর উর্বর উপত্যকা বেষ্টিত পাহাড়ের ওপর অবস্থিত| এবং সেই “ফুলের সুন্দর মুকুট” হবে ঠিক মৃতপ্রায গাছের মতো| সেই শহর হবে গরমের প্রথম ডুমুর ফলের মতো, যাকে লোকে একপলক দেখেই দ্রুত তুলে নিয়ে খেয়ে নেয| 5 সেই সময় সর্বশক্তিমান প্রভু ই হবেন “সুন্দর মুকুট|” তাঁর অবশিষ্ট লোকদের জন্য, তিনি হবেন “ফুলের আশ্চর্য় মুকুট|” 6 তখন প্রভু তাঁর লোকদের বিচারকগণকে প্রজ্ঞা দান করবেন| নগরদ্বারে তিনি শক্তি য়োগাবেন| 7 কিন্তু এখন সেই সব নেতারা পান করে ভুল করেন| যাজক ও ভাব্বাদীরাও ভুলভ্রান্তি করেন কারণ তাঁরা অনুগ্র সুরা ও দ্রাক্ষারস পান করেন| তাঁরা হোঁচট খেতে খেতে পড়ে যাচ্ছেন| এমনকি দর্শনের সময়েও ভাব্বাদীদের ভুলভ্রান্তি হয়| বিচারকরাও ভুল করেন কারণ তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় পান করেন| 8 প্রতিটি টেবিল বমিতে আচ্ছন্ন| কোথাও এতটুকু পরিষ্কার স্থান নেই| 9 প্রভু লোকদের একটি শিক্ষা দেবার চেষ্টা করছেন| প্রভু লোকদের তাঁর শিক্ষামালা বোঝানোর চেষ্টা করছেন| লোকেরা যেন ছোট্ট শিশুর মত, সবেমাত্র মায়ের দুধপান করা ছেড়েছে| 10 তাই প্রভু তাদের সঙ্গে এমন ভাবে কথা বলেন যেন তারা শিশু:জাব্ লজাব্, জাব্ লজাব্,কাব্ লকাব্, কাব্ লকাব্,জি’ এর শাম্, জি’ এর শাম্| 11 প্রভু আশ্চর্য়্য় এই ভাষা ব্যবহার করবেন এবং এই সব লোকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তিনি অন্যান্য ভাষাও ব্যবহার করবেন| 12 অতীতে ঈশ্বর সেই সব লোকদের বলেছিলেন, “এখানে একটি বিশ্রামস্থল আছে| এটা শান্তিপূর্ণ জায়গা| ক্লান্ত মানুষদের এসে বিশ্রাম নিতে দাও| এটি একটি শান্তির নিকেতন|”কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের কথায় কর্ণপাত করেনি| 13 তাই ঈশ্বর তাদের সঙ্গে এমন ভাবে কথা বলেন যেন তারা শিশু:জাব্ লজাব্, জাব্ লজাব্,কাব্ লকাব্, কাব্ লকাব্,জি’ এর শাম্, জি’ এর শাম্|”যাতে তারা চারপাশে হেঁটে বেড়ায এবং হোঁচট খেয়ে আঘাত পাবে এবং তারা ফাঁদে পড়ে বন্দী হবে| 14 জেরুশালেমের নেতারা, তোমাদের প্রভুর বার্তা শোনা উচিত্| কিন্তু এখন তোমরা তাঁর কথায় কান দিচ্ছ না| 15 তোমরা বলছ, “মৃত্যুর সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে| পাতালের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে| সুতরাং আমরা শাস্তি পাব না| শাস্তি আমাদের আঘাত না করেই চলে যাবে| আমরা আমাদের কৌশল ও মিথ্যার পেছনে লুকিয়ে থাকব|” 16 এই সব কারণেই প্রভু, আমার মনিব বলেন, “সিয়োনের মাটিতে আমি একটি পাথর, একটি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করব| এটি একটি মূল্যবান পাথর| সেই গুরুত্বপূর্ণ পাথরের ওপর সমস্ত কিছু গড়ে উঠবে| সেই পাথরটির কাছে এসে বিশ্বস্ত লোকরা কখনো ভয় পাবে না|” 17 “দেওয়াল সরল কিনা তা জানার জন্য মানুষ এক ওলন দড়ি ব্যবহার করে| ঠিক একই ভাবে কোনটা ঠিক তা দেখানোর জন্য আমি বিচার এবং ধার্ম্মিকতাকে ব্যবহার করব|“তোমরা শযতান মানুষরা যারা মিথ্যা এবং কৌশলের পিছনে লুকোতে চাও তারা শাস্তি পাবে| কোন ঝড় অথবা বন্যা আসছে তোমাদের লুকিয়ে থাকার স্থান ধ্বংস করতে| 18 মৃত্যুর সঙ্গে তোমাদের চুক্তি মুছে যাবে| মৃত্যুর স্থানের সঙ্গে তোমাদের চুক্তি কোন কাজেই আসবে না|“যখন সেই ভয়ঙ্কর শাস্তি আসবে তখন তোমরা তার দ্বারা পদদলিত হবে| 19 যত বার তোমাদের শাস্তি আসবে, তত বারই সে তোমাদের নিয়ে যাবে| তোমাদের শাস্তি হবে ভয়ঙ্কর| তোমাদের শাস্তি খুব ভোরবেলা আসবে এবং চলতে থাকবে গভীর রাত পর্য়ন্ত| বার্তাটি শুধুমাত্র বোঝার পরই তা তোমাকে ভয়ে কাঁপিয়ে তুলবে| 20 “তখন তোমরা এই গল্পটি বুঝবে: একটি মানুষ তার পক্ষে খুবই ছোট একটি বিছানায ঘুমোবার চেষ্টা করেছিল| এবং তার একটি কম্বল ছিল যা তাকে আচ্ছাদিত করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল না| বিছানা এবং কম্বল দুটিই ছিল ব্যবহারের অয়োগ্য| তোমাদের চুক্তিগুলিও ঠিক সেরকম|” 21 পরাসীম পর্বতে প্রভু যেমন যুদ্ধ করেছিলেন ঠিক তেমন ভাবেই যুদ্ধ করবেন| গিবিয়োনের উপত্যকায় প্রভু যেমন রুদ্ধ হয়েছিলেন ঠিক তেমনি তিনি রুদ্ধ হবেন| প্রভুর যা কিছু করবার আছে তা তিনি করবেন| তিনি কিছু আশ্চর্য়্য় কাজ করবেন| তবে তিনি তাঁর কাজ শেষ করবেন| তাঁর কাজ হবে একজন অপরিচিতের কাজ| 22 এখন তোমরা সেই সব জিনিসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে না| যদি তোমরা লড়াই কর তাহলে তোমাদের ঘিরে রাখা দড়িগুলির বাঁধন আরো শক্ত হয়ে উঠবে|যা আমি শুনেছি তা থাকবে অপরিবর্তিত| যে সব কথা আমি শুনেছি তা প্রভু সর্বশক্তিমান, পৃথিবীর শাসনকর্তার মুখ নিঃসৃত| তাই সে সব কথার কোন পরিবর্তন হবে না| তাঁর কথিত সমস্ত ব্যাপারই ঘটবে| 23 যে বাণী আমি তোমাদের শোনাচ্ছি তা মন দিয়ে শোন| 24 এক জন কৃষক কি সব সময় তার ক্ষেতে লাঙ্গল চালায? না| সে কি সব সময় মাটি তৈরী করে? না| 25 কৃষক মাটি তৈরী করে| তারপর বীজ বপন করে| বিভিন্ন পদ্ধতিতে সে বিভিন্ন বীজ বপন করে| কৃষক শুলফার বীজ ছড়ায, তারপর সে জীরের বীজ মাটিতে ছড়ায| সে গমের বীজ বোনে সারিবদ্ধ ভাবে| এক জন কৃষক বার্লিগাছ বিশেষ স্থানে বপন করে| এক বিশেষ ধরণের বীজ সে রোপণ করে শস্য ক্ষেতের ধারে| 26 আমাদের ঈশ্বর তোমাদের শিক্ষা দেবার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন| এই উদাহরণ দেখায় যে মানুষকে শাস্তি দেবার সময় ঈশ্বর সঠিক উপায়েই শাস্তি দেবেন| 27 শুলফার বীজ মাড়বার জন্য কৃষক কি ধারালো দাঁতওযালা পাটাতন ব্যবহার করে? না! জীরা বীজ মাড়বার জন্য কি কৃষক কোন চতুশ্চএ শকট ব্যবহার করে? না! এই শস্যগুলির বীজ থেকে খোসা ছাড়ানোর জন্য এক জন কৃষক একটি ছোট লাঠি ব্যবহার করে| 28 যখন কেউ রুটি তৈরী করবার জন্য শস্যকে তৈরী করে সে তখন গমকে আটায চূর্ণ করে| কিন্তু সে এটা চির কাল ধরে করে না| সে হয়তো এর ওপর দিয়ে তার ঘোড়া এবং মালবাহী গাড়ি চালিযে নিয়ে যেতে পারে কিন্তু এটা সম্পূর্ণ চূর্ণ হবে না| প্রভু তাঁর লোকদের একই ভাবে শাস্তি দিয়ে থাকেন| 29 প্রভু সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে এই শিক্ষা আসে| প্রভু আশ্চর্য়্য় সব উপদেশ দেন| ঈশ্বর সত্যই প্রজ্ঞাবান|
1 ঈশ্বর বললেন, “অরীযেলের দিকে তাকাও! অরীযেল, সেই শহর যেখানে দাযূদ তাঁবু ফেলেছিলেন| বছরের পর বছর তার ছুটি অব্যাহত ছিল| 2 আমি অরীযেলকে শাস্তি দিয়েছি| দুঃখ আর কান্নায শহরটা ভরে গিয়েছে| কিন্তু সে আমার চির কালের অরীযেল| 3 “অরীযেল আমি তোমার চারিদিকে সৈন্য মোতাযেন করেছি| আমি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের দুর্গসমূহ তৈরী করেছি| 4 তুমি পরাজিত হলে এবং মাটিতে মিশে গেলে| এখন আমি মাটিতে ভূতের মতো তোমার কণ্ঠস্বর শুনতে পাই| তোমার কথাগুলো গোঙানির মত ধূলোর মধ্যে থেকে আসে|” 5 তোমার শএুরা সংখ্যায় ক্ষুদ্র ধূলিকণার মতো প্রচুর| যারা তোমার প্রতি নিষ্ঠুর তাদের সংখ্যা বাতাসে ভেসে যাওয়া ভূসির মত| 6 হঠাত্ এরকম ঘটবে: সর্বশক্তিমান প্রভু ভূমিকম্প, বজ্রপাত, হৈ-হল্লা দিয়ে তোমাকে শাস্তি দেবেন| ঝড়, তীব্র বাতাস আর আগুন সব কিছু পুড়িয়ে দেবে আর ধ্বংস করবে| 7 অনেক দেশ অরীযেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে| ওটা হবে রাতের এক দুঃস্বপ্নেরই মত| সৈন্যরা অরীযেলকে শাস্তি দেবে| 8 কিন্তু ঐ সৈন্যদের কাছেও সেটা স্বপ্ন হবে| তারা যা চায় তা পাবে না| যেন এক ক্ষুধার্ত মানুষের আহারের স্বপ্ন দেখা| যখন মানুষটা জেগে ওঠে তখনও সে ক্ষুধার্ত| যেন এক তৃষ্ণার্ত মানুষের জলের স্বপ্ন দেখা| যখন মানুষটা জেগে ওঠে তখনও সে তৃষ্ণার্ত থাকে|সিয়োনের বিরুদ্ধে লড়া সমস্ত দেশের ক্ষেত্রে এসব ঘটনা সত্যি হবে| এই সমস্ত দেশ যা চায় তারা তা কিছুতেই পাবে না| 9 চমত্কৃত ও বিহবল হও| তুমি মদ্যপ হয়ে উঠবে কিন্তু দ্রাক্ষারস থেকে নয়| দেখ এবং বিহবল হও| তুমি হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে কিন্তু সুরাপানে নয়| 10 প্রভু তোমাকে ঘুম কাতুরে বানাবেন| বন্ধ করে দেবেন তোমার দুচোখ| (ভাব্বাদীরা হবে তোমার দুচোখ|) প্রভু তোমাদের মাথা ঢেকে দেবেন| (ভাব্বাদীরা হবে তোমার মাথা|) 11 আমি তোমাকে বলছি যে এসব ঘটনাগুলি ঘটবে| কিন্তু তোমরা আমাকে বুঝবে না| আমার কথাগুলো তোমার কাছে বন্ধ ও সীলমোহর করা বই-এর মধ্যের কথাগুলোর মত মনে হবে| তুমি বইটি এমন কাউকে দিতে পার যে পড়তে পারে| কিন্তু তাকে যদি পড়তে বল সে বলবে, “আমি পড়তে পারব না| কারণ বইটি বন্ধ এবং তা আমি খুলতে পারব না|” 12 অথবা তুমি কাউকে বইটি দিতে পার, যে পড়তে পারে না| সেই লোকটিকে পড়তে বললে সে বলবে, “আমি এই বই পড়তে পারব না| কারণ কি ভাবে বইটি পড়তে হয় তা আমার জানা নেই|” 13 আমার প্রভু বলেন, “ঐ মানুষরা আমার প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছে| তাদের মুখ নিঃসৃত শব্দ আমার প্রতি সম্মান জানায| কিন্তু তাদের হৃদয় আমার থেকে অনেক দূরে| আমাকে যে সম্মান তারা জানায তা তাদের মুখস্থ করা মানবিক বিধিসমূহ ছাড়া আর কিছুই নয়| 14 সুতরাং আমি আমার শক্তিশালী ও আশ্চর্য়্য়জনক এযিাকলাপ দিয়ে লোকেদের বিস্ময বিহবল করা অব্যাহত রাখব| ওদের জ্ঞানী লোকরা তাদের জ্ঞান হারিযে ফেলবে| ওদের জ্ঞানী লোকরা উপলদ্ধি করবার ক্ষমতাও হারিযে ফেলবে|” 15 সেই সব মানুষ প্রভুর কাছ থেকে অনেক কিছুই লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে| তারা মনে করে যে প্রভু কিছুতেই বুঝতে পারবেন না| তারা অন্ধকারের মধ্যে পাপ কাজ করে| তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, “আমাদের কেউ দেখতে পায় না, কেউ জানতেও পারবে না আমরা আসলে কে?” 16 তোমরা আসলে বিভ্রান্ত| তোমরা মনে কর যে মাটি আর কুমোর সমান| তোমরা ভাবো যে তৈরী জিনিষটি, যে তাকে তৈরী করেছে তাকে বলতে পারে, “তুমি আমাকে তৈরী করনি!” এটা আসলে একটা পাত্রের মত যে তার সৃষ্টিকর্তাকে বলছে, “তুমি বোঝ না|” 17 সত্যটি হল: কিছু সময় পরেই লিবানোন উত্তর ইস্রায়েলের সু-আবাদি কর্মিল পর্বতের মতো উর্বর চাষের জমি পেয়ে যাবে এবং কর্মিল পর্বত ঘণ অরণ্যের মতো হবে| 18 বধির শুনতে পাবে, বই থেকে পড়ে শোনানো কথাগুলি; অন্ধ কুযাশা ও অন্ধকারের মধ্যেও দেখতে পাবে| 19 প্রভু গরীব মানুষদের সুখী করবেন| ইস্রায়েলে গরীব লোকরা ইস্রায়েলের সেই পবিত্র এক জনের নামে আনন্দ করবে| 20 যখন নিষ্ঠুর ও উদ্ধত লোকরা আর থাকবে না তখন এটা ঘটবে| যারা মন্দ কাজ করার জন্য সুযোগ খুঁজে বেড়ায সেই সব লোকদের পতনের পর এটা ঘটবে| 21 সেই সব লোক লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্য়ে অভিযোগ নিয়ে আসে| আদালতে তারা বিচারকদের জন্য ফাঁদ পাতার চেষ্টা করে| তারা আইন মেনে চলা লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্য়ে বিচার আনার জন্য তাদের আইনি তর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে| 22 সুতরাং, প্রভু যাকোবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন| (এই সেই প্রভু যিনি অব্রাহামকে উদ্ধার করেছিলেন|) প্রভু বলেন, “এখন যাকোব (ইস্রায়েলের লোক) বিব্রত ও লজ্জিত হবে না| 23 তিনি তাঁর সকল শিশুদের দেখবেন এবং বলবেন যে আমার নাম পবিত্র, আমি এই সব শিশুদের নিজের হাতে তৈরী করেছি এবং তারা বলবে যে যাকোবের সেই পবিত্র জনটি (ঈশ্বর) হলেন খুব বিশিষ্ট| এই সকল শিশুরাই ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করবে| 24 যাদের আত্মা বিপথে গিয়েছিল তারা বুঝতে পারবে এবং যারা নালিশ করেছিল তারা উচিত্ শিক্ষা পাবে|”
1 প্রভু বললেন, “এই বিদ্রোহী শিশুদের দিকে দেখ| তারা আমাকে মান্য করে না| তারা পরিকল্পনা করে| কিন্তু তারা আমাকে সাহায্য করতে বলে না| তারা অন্য দেশের সঙ্গে চুক্তি করে| কিন্তু আমার আত্মা ঐ ধরণের চুক্তি চায় না| এই সব লোকরা তাদের পাপের সঙ্গে আরো অনেক পাপ যোগ করছে| 2 এই সব শিশুরা সাহায্যের জন্য মিশরে যাচ্ছে| কিন্তু তারা কখনো আমাকে জিজ্ঞাসা করেনি, এটা তারা ঠিক কাজ করছে কি না| তাদের আশা মিশরের রাজা ফরৌণ তাদের সাহায্যে করবে| তারা চায় মিশর তাদের রক্ষা করুক| 3 “কিন্তু আমি বলব মিশরে লুকিয়ে থাকা তোমাদের পক্ষে সহায়ক হবে না| মিশর তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না| 4 তোমাদের নেতারা মিশরীয় শহর সোযনে গিয়েছে| এবং তোমাদের রাষ্ট্রদূতরা মিশরীয় শহর হানেষে গিয়েছে| 5 কিন্তু তারা আশাহত হবে| তারা এমন একটা জাতির উপর নির্ভরশীল যারা সাহায্য করতে অপারগ| মিশর হচ্ছে অকর্মণ্য| প্রয়োজনীয় সাহায্য ওরা দিতে পারবে না| মিশর তাদের কাছে শুধুমাত্র লজ্জা এবং বিহবলতা আনবে|” 6 যিহূদার দক্ষিণে মরু অঞ্চল নেগেভের প্রাণীর জন্য বার্তা|নেগেভ হল একটি বিপজ্জনক স্থান| এই জায়গাটি সিংহ এবং দ্রুতগামী বিষাক্ত সাপে ভর্তি| কিন্তু কিছু লোক নেগেভের মধ্যে দিয়ে মিশরে যাতায়াত করে| এই সব লোক তাদের জিনিসপত্র গাধার পিঠে চাপিয়ে নিয়ে যায়| উটের পিঠের ওপর তাদের ধনসম্পত্তি বয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সেই দেশে যার ওপর লোকে নির্ভর করে আছে, যে দেশ তাদের সাহায্য করতে অপারগ| 7 এই অকর্মণ্য দেশটি হল মিশর| মিশরের সাহায্য কোন কাজেই লাগবে না| সুতরাং আমি মিশরের নাম দিয়েছি, “অকর্মণ্য দানব|” 8 এখন এটাকে কোন চিহ্নের ওপর লেখ যাতে সমস্ত মানুষ এটাকে দেখতে পায় এবং এটা লিখে রাখ একটা বইয়ের মধ্যে| শেষের দিনের জন্য এগুলি লেখ যাতে এগুলি সুদূর ভবিষ্যতে সাক্ষ্যস্বরূপ চিরকাল থাকে| 9 এই সব লোক শিশুদের মতো| তারা তাদের পিতামাতাকে মান্য করতে চায় না| তারা মিথ্যা কথা বলে এবং ঈশ্বরের বিধি শুনতে অস্বীকার করে| 10 তারা ভাব্বাদীদের বলে, “ভবিষ্যদ্বাণী করো না! যা যা আমাদের করা উচিত্ সে বিষয়ে স্বপ্ন দেখো না! আমাদের সত্যি কথা বলো না| সুন্দর জিনিসের কথা আমাদের বল এবং আমাদের মধ্যে ভাল অনুভূতির সঞ্চার কর! আমাদের শুধু ভাল ভাল জিনিস দেখাও! 11 সেই সব জিনিস দেখাবে যা যা ঘটবে! সেগুলিকে আমাদের থেকে বরং দূরে সরিয়ে রাখ! ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কথা আমাদের বোল না|” 12 ইস্রায়েলের পবিত্র জনটি বলেন, “তোমরা প্রভুর কাছ থেকে আসা এই বার্তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছ| তোমরা পীড়ন ও মিথ্যার ওপর নির্ভর করতে চাও| 13 এসব কাজের জন্য তোমরা অপরাধী| তোমরা আসলে ফাটল ধরা উঁচু প্রাচীরের মতোই| সেই প্রাচীরের পতন হবে এবং তা ছোট ছোট টুকরোয পরিণত হবে| 14 তোমরা চীনামাটির বাসনের মতো ভেঙ্গে ছোট ছোট টুকরোয পরিণত হবে| এই টুকরোগুলি কোন কাজেই লাগবে না| তোমরা সেই টুকরোগুলোকে গরম কযলার টুকরো তোলার কাজে অথবা জলাশয থেকে জল আনার কাজে ব্যবহার করতে পারবে না|” 15 প্রভু, আমার গুরু, ইস্রায়েলের পবিত্র জনটি বলেন, “তোমরা যদি আমার কাছে ফিরে আসো তবে সুরক্ষিত হবে| তোমরা যদি আমার ওপর আস্থা রাখ তবেই পাবে আসল শক্তি| কিন্তু তোমাদের শান্ত হতে হবে|”কিন্তু তোমরা তা করতে চাও না! 16 তোমরা বলবে, “না, আমাদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোড়া চাই|” নিশ্চয়ই তোমরা ঘোড়ায় চেপে পালিয়ে যাবে| কিন্তু শএুরা তোমাদের পেছনে তাড়া করবে| এবং শএুরা তোমাদের ঘোড়ার থেকেও দ্রুতগামী হবে| 17 এক জন শএু তোমাদের ভয় দেখাবে এবং তোমাদের এক হাজার লোক পালিয়ে যাবে| যখন পাঁচজন শএু তোমাদের ভয় দেখাবে তখন তোমরা সবাই ওদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে| তোমাদের সেনাদের যে জিনিসটা শুধুমাত্র পড়ে থাকবে তা হল পাহাড়ের ওপর একটি পতাকার দণ্ড| 18 প্রভু তোমাদের প্রতি তাঁর করুণা দেখাতে চান| তিনি অপেক্ষা করছেন| তিনি উঠে দাঁড়াতে চান এবং তোমাদের আরাম দিতে চান| প্রভু ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ এবং যারা প্রভুর কৃপার অপেক্ষায আছেন তারা সুখী হবে| 19 প্রভুর লোকরা সিয়োন পর্বতের ওপর জেরুশালেমে বাস করবে| তোমরা এন্দনরত থাকবে না| প্রভু তোমাদের কান্না শুনবেন এবং তিনি তোমাদের আরাম দেবেন| প্রভু তোমাদের কথা শুনবেন এবং তিনি তোমাদের কৃপা করবেন| 20 অতীতে আমার প্রভু (ঈশ্বর) তোমাদের দুঃখ ও দুর্দশা দিয়েছিলেন- সেটা ছিল তোমাদের দৈনন্দিনের রুটি ও জলের মতো| কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের শিক্ষাদাতা এবং তিনি তোমাদের কাছ থেকে চিরকাল লুকিয়ে থাকবেন না| তোমরা নিজেদের চোখেই নিজেদের শিক্ষককে দেখতে পাবে| 21 তোমরা যদি জীবনের ভুলপথে চল, (ডানদিকে অথবা বাঁদিকে) পিছন থেকে এই কথাগুলো শুনতে পাবে: “এটাই সঠিক পথ| তোমাদের এই পথেই চলতে হবে|” 22 তোমাদের সোনা এবং রূপোয আচ্ছাদিত মূর্ত্তি আছে| সেইসব মূর্ত্তিসমূহ তোমাদের পাপী করে তুলেছে| কিন্তু তোমরা সেই মূর্ত্তিদের সেবা করা থেকে বিরত হবে| তোমরা এইসব মূর্ত্তিদের নোংরা আবর্জনার মত ফেলে দেবে| 23 সেই সময় প্রভু তোমাদের জন্য বৃষ্টি পাঠাবেন| তোমরা জমিতে বীজ বপন করবে| এবং সেই জমি ভরে উঠবে তোমাদের খাদ্যদ্রব্য়ে| তোমাদের শস্য সংগ্রহ খুব ভালো হবে| তোমাদের গবাদি পশুসমূহ বৃহত্ পশুচারণ ভূমিগুলোতে চারণ করবে| তোমাদের চাহিদামত প্রচুর ফসল হবে| 24 তোমাদের গাধা ও গবাদিপশু সমূহ (যেগুলিকে তোমরা জমি কর্ষণের জন্য ব্যবহার কর) প্রচুর পরিমাণে উত্কৃষ্টতম জাব খাবে যেগুলো কাঁটাযুক্ত দণ্ড ও কুড়ুল দিয়ে ছড়ানো| 25 প্রতিটি পাহাড় আর টিলায জলপূর্ণ ছোট ছোট নদী থাকবে| বহু মানুষের হত্যা ও বহু স্তম্ভ ধ্বংসের পর এই সব ঘটবে| 26 সেই সময় চাঁদের আলো হবে সূর্য়ের চেয়েও উজ্জ্বল| সূর্য়ের আলো হবে এখনকার চেয়ে সাতগুণ বেশী উজ্জ্বলতর| সূর্য়ের একদিনের আলোই হবে গোটা সপ্তাহের সমান| এসব ঘটবে তখনই যখন প্রভু তাঁর আহত মানুষদের পট্টি বাঁধবেন এবং মারধোরের ফলে তাদের যে ক্ষত হয়েছে তা সারাবেন| 27 দেখো! প্রভুর নাম বহুদূর থেকে আসছে| তাঁর রোধ ঘন মেঘের ধোঁযাসহ একটি আগুনের মত| ঈশ্বরের মুখ রোধ পরিপূর্ণ এবং তাঁর জিহবা একটি জ্বলন্ত অগ্নির মত| 28 প্রভুর আত্মা একটি বড় নদীর মত বেড়েই চলেছে যতক্ষণ না তিনি আকণ্ঠ ডুবে যান| প্রভু দেশগুলির বিরুদ্ধে মামলা চালাবেন| ওটা ঠিক যেন তিনি তাদের ‘ধ্বংসের ছাঁকনির’ ভেতর ঝাঁকাচ্ছেন| সেটা হবে যেন জাতিগুলিকে বিপথে নিয়ে যাবার জন্য তার মুখে লাগাম দেওয়া আছে যা দিয়ে পশুদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়| 29 সেই সময়, তোমরা সুখের সঙ্গীত গেযে উঠবে| সেই সময়টা হবে একটি ছুটির শুরুর রাতের মত| তোমরা প্রভুর পর্বতে হাঁটার সময় খুবই খুশী হবে| তোমরা যখন প্রভু, ইস্রায়েলের শিলার কাছে উপাসনা করতে যাবে তখন তোমরা যাত্রা পথে মধুর গান শুনে খুশী হবে| 30 প্রভু তাঁর মহান স্বর সকল মানুষকে শোনাবেন| প্রভু সকল মানুষকে তাঁর রোধ নেমে আসা শক্তিশালী হাত দেখতে বাধ্য করবেন| সেই বাহু হবে মহান অগ্নির মতো, যা কিনা সব কিছুকেই পুড়িয়ে ফেলতে পারে| প্রভুর ক্ষমতা হবে ঝড় ও শিলাবৃষ্টির মত| 31 অশূর যখন প্রভুর রব শুনতে পাবে তখন সে ভীত হবে| একটি লাঠি দিয়ে প্রভু অশূরকে আঘাত করবেন| 32 প্রভু অশূরকে আঘাত করবেন এবং তার সঙ্গে ঢাক ও বীণা বাজানো হবে| প্রভু তাঁর মহান শক্তিশালী বাহুবলে অশূরকে পরাস্ত করবেন| 33 তোফত্কেবহু দিন থেকে তৈরী করে রাখা হয়েছে| এটি রাজার জন্য তৈরী হয়েছে| এটাকে খুবই গভীর এবং বিস্তৃত ভাবে তৈরী করা হয়েছে| সেখানে প্রচুর কাঠ ও আগুন রয়েছে| গন্ধকের জ্বলন্ত স্রোতের মতো প্রভুর আত্মা সেখানে পৌঁছোবে এবং তাকে পুড়িয়ে দেবে|
1 সাহায্যের জন্য মিশর অভিমুখে যাওয়া লোকদের দিকে তাকাও| তারা ঘোড়া চায় এই মনে করে যে ঘোড়ারা তাদের রক্ষা করবে| তারা মনে করে যে মিশরের অনেকগুলি রথ ও অশ্বারোহী সৈন্য তাদের রক্ষা করবে| তারা মনে করে তারা খুবই নিরাপদে আছে| কারণ তাদের সেনাবাহিনী খুবই বিশাল| লোকদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রতি আস্থা নেই| তারা প্রভুর কাছে সাহায্যও চায় না| 2 কিন্তু প্রভু জ্ঞানী এবং তিনি তাদের সমস্যায় ফেলবেন| তারা প্রভুর আদেশের পরিবর্তন ঘটাতে পারে না| প্রভু দুষ্ট লোকদের (যিহূদা) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন| এবং প্রভু দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করবেন যারা তাদের সাহায্য করেছিল| 3 মিশরের লোকরা নিছকই মানুষ, ঈশ্বর নয়| মিশরের ঘোড়াগুলি পশুমাত্র, আত্মা নয়| প্রভু তাঁর বাহুকে কাজে লাগাবেন এবং সাহায্যকারী দেশ মিশরকে পরাস্ত করবেন| এবং (যিহূদার) যে সমস্ত লোকরা সাহায্য চেয়েছিল তাদের পরাজয় হবে| তারা সবাই এক সঙ্গে ধ্বংস হবে| 4 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “একটা সিংহ অথবা সিংহশাবক যখন কোন পশুকে খাবার জন্য ধরে সে তখন তার শিকারের ওপর দাঁড়ায ও গর্জন করে| তখন কোন কিছুই সিংহটিকে ভয় দেখাতে পারে না| যদি মানুষ আসে এবং চেষ্টাও করে সিংহটি ভীত হয় না| মানুষ যথেষ্ট হল্লা জুড়তে পারে| কিন্তু সিংহ পালায় না|”একই ভাবে সর্বশক্তিমান প্রভু আসবেন সিয়োন পর্বতে| পর্বতের ওপর প্রভু যুদ্ধ করবেন| 5 বাসার ওপর উড়ন্ত পাখির মত সর্বশক্তিমান প্রভু জেরুশালেমের হয়ে যুদ্ধ করবেন| প্রভু তাঁকে রক্ষা করবেন| প্রভু জেরুশালেমকে প্রতিরক্ষা করবেন এবং তাকে উদ্ধার করবেন| 6 তোমরা ইস্রায়েলের শিশুরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধগামী| তোমাদের উচিত্ ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসা| 7 তখনই সোনা রূপো দিয়ে তোমাদের তৈরী করা মূর্ত্তির পূজা লোকেরা ছেড়ে দেবে| তোমরা সত্যিই ঐসব মূর্ত্তি তৈরী করবার সময় পাপ করেছ| 8 এটা সত্যি যে অশূর তরবারির সাহায্যে পরাস্ত হবে| কিন্তু তরবারিটি মানুষের তরবারি নয়| অশূর ধ্বংস হবে| কিন্তু সেই ধ্বংস মানুষের তরবারি দিয়ে হবে না| অশূর ঈশ্বরের তরবারি দেখে পালাবে| কিন্তু যুবকরা ধরা পড়বে এবং তাদের দাস বানানো হবে| 9 তাদের নিরাপদ স্থান ধ্বংস হবে| তাদের নেতারা পরাস্ত হয়ে তাদের পতাকা ত্যাগ করবে|ঐসব কথা প্রভুই বলেছেন| প্রভুর অগ্নিস্থান (বেদী) সিয়োনে আছে| প্রভুর উনুন (বেদী) জেরুশালেমে আছে|
1 আমি যা যা বলি শোন| একজন রাজার এমন ভাবে শাসন করা উচিত্ যা প্রজাদের মঙ্গল সাধন করে| নেতারা যখন লোকদের নেতৃত্ব দেয় তখন তাদের নিরপেক্ষ ও উচিত্ সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার| 2 যদি এসব ঘটনাগুলি ঘটে তবে রাজা সেই জায়গার মতোই হবে যেখানে রোদ ও বৃষ্টি থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারব| এটা হয়ে উঠবে শুকনো জমিতে জলপ্রবাহ সমূহের মতো| এটা হবে গরম ভূখণ্ডে বিশাল পাথর খণ্ডের শীতল ছায়ার মতো| 3 লোকরা সাহায্যের জন্য রাজার কাছে যাবে এবং তিনি যা বলবেন লোকরা সত্যি সত্যিই তা শুনবে| 4 যে সব লোকরা এখন বিভ্রান্ত তারা সব কিছু বুঝতে সক্ষম হবে| যারা স্পষ্ট কথা বলতে পারে না তারা স্পষ্ট ও দ্রুত কথা বলতে পারবে| 5 দুষ্ট লোকদের বদান্য বলে ডাকা হবে না| লোভী লোকদের কেউ উদার বলবে না| 6 এক জন দুষ্ট লোক সর্বদাই অরুচিকর কথা বলে| এবং তার মনে পাপ কাজ করার চিন্তাই থাকে| এক জন বোকা লোক কেবল ভুল কাজ করে| সে যখন ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলে তখনো প্রতারণাপূর্ণ কথা বলে| এক জন খল লোক ক্ষুধার্তকে খাবার দেয় না| ঈশ্বরের বিষয়ে অজ্ঞ যে মানুষ সে তৃষ্ণার্তকে জল দেয় না| 7 সেই দুষ্ট লোকটি পাপবুদ্ধিকে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করে| সে গরীব মানুষের সব কিছু আত্মসাত্ করার পরিকল্পনা করে| এমনকি যখন গরীব লোকটি সত্যি কথা বলছে সেই দুষ্ট লোক গরীব মানুষদের বিষয়ে মিথ্যা কথা বলে| 8 কিন্তু ভালো নেতা ভালো কাজের পরিকল্পনা করেন এবং সেই সব ভালো কাজই তাকে মহান নেতার আসনে বসায| 9 তোমাদের মহিলাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও শান্ত| তোমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছ| কিন্তু তোমাদের উঠে দাঁড়িয়ে আমার কথা শোনা উচিত্| 10 মহিলারা, তোমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করো| কিন্তু এক বছর পর তোমরা সমস্যায় পড়বে| কারণ পরের বছর তোমরা দ্রাক্ষাফল সংগ্রহ করতে পারবে না| সংগ্রহ করার মতো কোন দ্রাক্ষাফল তখন থাকবে না| 11 মহিলারা তোমরা এখন শান্ত| কিন্তু তোমাদের ভীত হওয়া উচিত্| মহিলারা তোমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছ কিন্তু তোমাদের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত্| তোমরা সুন্দর পোশাক খুলে দুঃখের পোশাক পর| তোমরা কোমরে জড়িয়ে রাখ সেই কাপড়| 12 তোমার দুঃখে ভারাএান্ত স্তনয়ুগলকে সেই সব দুঃখের কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখ|কাঁদো যেহেতু তোমার জমি শস্য শূন্য| তোমার দ্রাক্ষাক্ষেত যা একসময় ফসল দিত তা এখন শূন্য| 13 আমার লোকদের দেশের জন্য কাঁদো| কাঁদো, কারণ দেশে কাঁটাগাছ আর আগাছাই জন্মাবে| কাঁদো সেই সব শহর ও ঘরবাড়ির জন্য যেগুলি এক সময় আনন্দে পরিপূর্ণ ছিল| 14 লোকরা রাজধানী, শহর ত্যাগ করবে| প্রাসাদ ও দুর্গগুলি পরিত্যক্ত হবে| লোকরা ঘরে বসবাস করতে পারবে না| তারা গুহায গিয়ে বাস করবে| বুনো গাধা ও মেষ শহরে বসবাস করবে| জীবজন্তুরা সেখানে ঘাস খেতে যাবে| 15 যতদিন না ঈশ্বর ওপর থেকে আমাদের জন্য তাঁর আত্মা প্রেরণ করেন ততদিন এটা চলতে থাকবে| কিন্তু ভবিষ্যতে এই মরুভূমি উত্তর ইস্রায়েলের সুউর্বর আবাদি এলাকা কর্মিলে পরিণত হবে- সেখানে ন্যায়বিচার বিরাজ করবে| এবং কর্মিল হবে সবুজ বনভূমির মত| সুবিচার সেখানে বিরাজ করবে| 16 17 এই ধার্মিকতা চির কালের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা এনে দেবে| 18 আমার লোকরা এই সুন্দর শান্তিপূর্ণ জায়গায় বাস করবে| আমার লোকরা নিরাপদ তাঁবুতে বাস করবে| তারা শান্ত ও শান্তিপূর্ণ জায়গায় বাস করবে| 19 কিন্তু এই সকল ঘটনা ঘটার আগে জঙ্গলটার পতন ঘটাতে হবে| শহরটিকে পরাস্ত করতে হবে| 20 এই সব লোকদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিটি জল প্রবাহের ধারে ফসল বুনবে| তোমাদের গাধা এবং গবাদি পশুরা এর চারি দিকে ঘুরে বেড়াবে ও স্বাধীন ভাবে খাদ্যগ্রহণ করবে| তোমরা খুব সুখী হবে|
1 দেখ! তোমরা যারা তোমাদের কাছ থেকে কখনও কিছু চুরি করেনি, তাদের সঙ্গে ঝগড়া করো আর তাদের জিনিষ চুরি করো| তোমরা সেই সব লোকের বিপক্ষে যাবে, যারা কখনো তোমাদের বিপক্ষে যায়নি| তাই যখন তোমরা চুরি করা বন্ধ করবে অন্য লোকরা তখন তোমাদের কাছ থেকে চুরি করবে| তোমরা যখন অন্যের বিপক্ষে যাওয়া বন্ধ করবে তখন অন্য লোকরা তোমাদের বিপক্ষে যাওয়া শুরু করবে|তখন লোকরা বলবে, 2 “প্রভু আমাদের প্রতি সদয হোন| আমরা আপনার সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছি| প্রতিদিন সকালে আমাদের শক্তি দিন| আমরা বিপদে পড়লে আমাদের রক্ষা করুন| 3 আপনার শক্তিশালী রব লোকদের ভয়চকিত করে| এবং তারা আপনার কাছ থেকে দূরে পালাতে চায়| আপনার মহত্ব দেশগুলিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করবে|” 4 যুদ্ধে তোমরা জিনিসপত্র চুরি করবে| সেই সব জিনিস তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে| অনেক অনেক লোক আসবে| তারা তোমাদের ধনসম্পদ নিয়ে যাবে| এটা অনেকটা সেই সময়ের মতো হবে যখন পতঙ্গরা এসে শস্য ক্ষেতের সব ফসল খেয়ে নেয| 5 প্রভু খুবই মহান| তিনি খুব উচ্চস্থানে বসবাস করেন| প্রভু সিয়োনকে সাধুতা এবং ধার্ম্মিকতায পূর্ণ করবেন| 6 জেরুশালেম তুমি খুব ধনী| জেরুশালেমের লোক, তোমরা ঈশ্বরের জ্ঞান ও বিচক্ষণতা দ্বারা পরিপূর্ণ| তোমরা পরিত্রাণপ্রাপ্ত| তোমরা প্রভুকে শ্রদ্ধা কর এবং এটাই তোমাদের ধনী করেছে| সুতরাং তোমরা জান যে তোমরা সেটি করা অব্যাহত রাখবে| 7 কিন্তু শোন! বার্তাবাহকরা বাইরে কাঁদছে| যে সব বার্তাবাহকরা শান্তি আনছে তারাই খুব কাঁদছে| 8 রাস্তা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| পথ দিয়ে কেউ হাঁটছে না| মানুষ তাদের তৈরি চুক্তি ভঙ্গ করেছে| লোকরা সাক্ষ্য, প্রমাণ কোন কিছুই বিশ্বাস করতে চাইছে না| কেউ কাউকে শ্রদ্ধা করছে না| 9 দেশ রুগ্ন ও মৃতপ্রায| লিবানোন মারা যাচ্ছে| শারোণ উপত্যকা শুষ্ক ও শূন্য| একদা বাশন ও কর্মিলে সুন্দর গাছ জন্মাত, কিন্তু এখন শুকনো ও শূন্য| 10 প্রভু বলেন, “আমি এখন উঠে দাঁড়াব এবং আমার মহত্ব দেখাব| এখন আমি মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠব| 11 তোমরা অরয়োজনীয় কাজ করেছ| সেই সব কাজ হল খড় এবং খড়কুটোর মতো| সেই সবের কোন মূল্য নেই| তোমাদের আত্মা আগুনের মত হবে এবং তা তোমাদের পোড়াবে| 12 লোকদের পোড়ানো হবে যতক্ষণ না তাদের হাড় চুনে পরিণত হয়| লোকরা কাঁটা ও বুনো আগাছার মত দ্রুত পুড়ে যাবে| 13 “তোমরা দূর দেশের লোক আমার কর্মের কথা শোন, তোমরা যে সব লোকরা আমার কাছে আছো তারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে জান|” 14 সিয়োনের পাপীরা ভীত| যারা ভুল কাজ করেছিল তারা ভয়ে কাঁপছে| তারা বলছে, “এই ধ্বংসাত্মক আগুনের মধ্যে আমাদের কেউ কি বাঁচাতে পারবে? এই অনন্ত আগুনের কাছে কে বাস করতে পারে?” 15 ভালো সত্ মানুষরা অন্যের টাকায লোভ দেয় না| তাই তারা ঐ আগুনের মধ্যেও বসবাস করতে পারবে| যে সব লোকরা ঘুষ নেয না, যারা অন্য লোককে খুন করার পরিকল্পনার কথা শুনতে চায় না, যারা খারাপ কাজের পরিকল্পনায অংশগ্রহণ করে না| 16 তারাও উচ্চস্থানে নিরাপদে বাস করবে| উঁচু কেল্লার দ্বারা তারা সুরক্ষিত থাকবে| এই সব লোকদের কাছে সব সময় জল ও খাবার থাকবে| 17 তোমাদের চোখ রাজাকে তাঁর সৌন্দর্য়্য়ে দেখতে পাবে| তোমরা অনেক দূরের সেই ভূখণ্ডটি দেখতে পাবে| 18 তোমরা তোমাদের অতীতের সমস্যার কথা ভাববে| তোমরা ভাববে, “কোথায় গেল সেই বিদেশীরা যারা কথা বললে তাদের কথা বুঝতাম না? কোথায় সেই ভিনদেশী কর্মী ও কর আদাযকারীর দল? কোথায় গেল সেই চররা যারা আমাদের প্রতিরক্ষা দুর্গগুলির গণনা করত? তারা সবাই চলে গিয়েছে|” 19 20 সিয়োনের দিকে তাকাও| এই শহরটি আমাদের ধর্মীয় ছুটির দিনের জন্য| জেরুশালেমের দিকে তাকাও যা একটি সুন্দর বিশ্রামের জায়গা| জেরুশালেম একটা তাঁবুর মতো যাকে কখনও সরানো যাবে না| যে পেরেকগুলি তাকে নির্দিষ্ট জায়গায় ধরে রেখেছে তাদের কখনও উপড়ে ফেলা যাবে না| তার দড়িগুলি কখনো ছিঁড়ে যাবে না| 21 কারণ প্রভু সর্বশক্তিমান সেখানে রয়েছেন| এই দেশ ছোট ও বড় নদী বেষ্টিত জায়গা| কিন্তু এই নদীগুলিতে শএুর নৌকা বা শক্তিশালী জাহাজ থাকবে না| তোমরা যারা এই নৌকোগুলোতে কাজ করছ, তারা এই দড়িগুলি নিয়ে কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারো| তোমরা মাস্তুলকে যথেষ্ট শক্তিশালী করতে পারো না| তোমরা তোমাদের পাল খুলতে পারবে না| কারণ প্রভু আমাদের বিচারক| প্রভু আমাদের বিধি প্রণেতা| প্রভুই আমাদের রাজা| তিনি আমাদের রক্ষা করেন| তাই তিনি আমাদের যথেষ্ট সম্পদ দেবেন| এমনকি পঙ্গু লোকরা যুদ্ধ থেকে প্রচুর সম্পদ লাভ করবে| 22 23 24 সেখানে বাস করা কোনও লোকই বলবে না যে “আমি রুগ্ন|” পাপমুক্ত লোকরাই সেখানে বাস করবে|
1 সমস্ত জাতিসমূহ, আমার কথা শোন! খুব কাছে এসে তোমাদের এই কথা শোনা উচিত্| পৃথিবীর এবং পৃথিবীর সব লোক এই সব কথা শোন| 2 প্রভু সমস্ত জাতি এবং তাদের সৈন্যদের প্রতি রুদ্ধ| তিনি তাদের সকলকে ধ্বংস করবেন| তিনি তাদের হত্যা করাবেন| 3 তাদের দেহগুলি বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে| তাদের শরীর থেকে দুর্গন্ধ বেরোবে| তাদের রক্ত পাহাড় থেকে গড়িযে পড়বে| 4 পাকানো কাগজের মত আকাশ গুটিযে বন্ধ হয়ে যাবে| নক্ষত্ররা মারা যাবে এবং দ্রাক্ষা গাছের পাতা বা ডুমুর পাতার মতো তাদের পতন হবে| আকাশের সব নক্ষত্র নষ্ট হয়ে যাবে| 5 প্রভু বললেন, “এসব ঘটবে যখন আকাশে আমার তরবারি রক্ত দ্বারা পরিতৃপ্ত হবে|”দেখ! প্রভুর তরবারি ইদোমকে কেটে দ্বিখণ্ডিত করবে| প্রভু এইসব লোকেদের ওপর তাঁর বিচার জারি করেছেন এবং তাদের অবশ্যই মৃত্যু হবে| 6 কারণ প্রভু মনে করেন ইদোম ও ইদোমের শহর বসরার ধ্বংসের সময় এসেছে| 7 সুতরাং মেষ, গবাদি পশু ও শক্তিশালী ষাঁড়দের ধ্বংস করা হবে| তাদের রক্তে দেশ পূর্ণ হবে| তাদের চর্বিতে ভূমি আচ্ছাদিত হবে| 8 এই সব জিনিসগুলি ঘটবে কারণ প্রভু শাস্তির সময় নির্ধারণ করেছেন| যে সব লোক সিয়োনের বিরুদ্ধে অন্যায় করেছে তাদের শাস্তি দেবার জন্য প্রভু একটি বছর বেছে নিয়েছেন| 9 ইদোমের নদীসমূহ গরম আলকাতারার মতো হবে| ইদোমের মাটি হবে পোড়া গন্ধকের মতো| 10 সারা দিনরাত জ্বলবে আগুন| কেউ সেই আগুন নেভাতে পারবে না| ইদোম থেকে ধোঁযা বের হতেই থাকবে| এই দেশ চির কালের জন্য ধ্বংস হয়ে যাবে| লোকরা আর কখনো ঐ দেশের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না| 11 পাখি এবং ক্ষুদ্র প্রাণীরা এই দেশকে দখল করে নেবে| পেঁচা ও দাঁড়কাকরা সেখানে বসবাস করবে| বিশৃঙ্খলার ফিতে এবং বিভ্রান্তির পাথর দিয়ে সেই দেশকে মাপা হবে| 12 ওখানকার নেতারা এবং সম্ভ্রান্ত লোকরা শাসন করবার মত কিছু পাবে না| তারা সবাই গত হয়ে থাকবে| 13 সমস্ত সুন্দর বাড়িগুলিতে কাঁটা ও বন্য ঝোপঝাড় জন্মাবে| বন্য কুকুর ও পেঁচা সে সকল বাড়িতে বসবাস করবে| বন্য জন্তুরা সেখানে বাস করবে| বড় পাখিরা ওখানে গজিযে ওঠা ঘাসের মধ্যে বাস করবে| 14 বন্য বিড়ালরা বন্য কুকুরের সঙ্গে এক সাথে বাস করবে| বন্য ছাগল তাদের বন্ধুদের ডাকবে| নিশাচর পশুরা সেখানে খুঁজে পাবে বিশ্রামস্থল| 15 সেখানে সাপরা বাসা বাঁধবে| তারা সেখানে ডিম পাড়বে| তারা ছায়ায় আশ্রয় নেবে এবং সেখানে ডিম ফোটাবে| কিন্তু বাজপাখীরাও সেখানে একের পর এক এসে জুটবে| 16 প্রভুর বইটির মধ্যে খুঁজে দেখ এবং পড়| একটা জিনিষও বাদ যাবে না| সেখানে লেখা আছে যে ঐ সকল প্রাণীদের এক জনও নিশ্চিহ্ন হবে না| এক জনও সঙ্গীহীন হবে না| ঈশ্বর এই আদেশ দিয়েছেন এবং ঈশ্বরের আত্মা তাদের একত্রিত করেছে| 17 ঈশ্বর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের সম্বন্ধে তিনি কি করবেন| তারপর ঈশ্বর তাদের জন্য একটা জায়গা নির্বাচন করবেন| ঈশ্বর একটি গণ্ডি কেটে তাদের জায়গা দেখিয়ে দেবেন| সুতরাং প্রাণীরা সেই জায়গাকে চিরকালের জন্য দখল করে নেবে| সেখানে তারা বসবাস করবে বছরের পর বছর|
1 শুষ্ক মরুভূমি খুশি হয়ে উঠবে| মরুভূমি আনন্দিত হবে এবং বেড়ে উঠবে ফুলের মতো| 2 মরুভূমি পরিপূর্ণ হবে ফুলের বাগানে এবং নিজের খুশীর কথা প্রকাশ করবে| মনে হবে যেন মরুভূমি আনন্দে নাচছে| মরুভূমি উত্তর ইস্রায়েলের পাইন গাছের জন্য বিখ্যাত লিবানোনের বনাঞ্চলের মতোই সুন্দর হয়ে উঠবে| মরুভূমি মনোরম হয়ে উঠবে কর্মিল পাহাড় ও শারোণ উপত্যকার মতো| এটা ঘটবে কারণ সব লোক প্রভুর অপার মহিমা দেখতে পাবে| আমাদের ঈশ্বরের সৌন্দর্য় মানুষ দেখতে পাবে| 3 দুর্বল বাহুকে শক্ত কর| দুর্বল হাঁটুকে শক্ত কর| 4 লোকরা ভীত ও বিভ্রান্ত| সেই সব লোকদের বল, “শক্ত হও! ভীত হযো না!” দেখ, তোমাদের ঈশ্বর আসবেন এবং তোমাদের শএুদের শাস্তি দেবেন| তিনি আসবেন এবং তোমাদের পুরস্কৃত করবেন| প্রভু আসবেন এবং তোমাদের রক্ষা করবেন| 5 তখন অন্ধ মানুষরা চোখে দেখতে পারবে| তাদের চোখ খুলে যাবে| তখন বধিররা শুনতে পাবে| তাদের কান খুলে যাবে| 6 পঙ্গু মানুষরা হরিণের মতো নেচে উঠবে এবং যারা এখন কথা বলতে পারে না তারা গেযে উঠবে সুখের সঙ্গীত| বসন্তের জল যখন মরুভূমিতে প্রবাহিত হবে তখনই এসব ঘটবে| বসন্ত নেমে আসবে শুষ্ক জমিতে| 7 এখন লোকরা মরীচিকাকে দেখছে জলের মতো কিন্তু সেই সময় আসবে প্রকৃত জলপ্রবাহ| শুষ্ক জমিতে কুযো থাকবে| মাটির তলা থেকে জল নিঃসৃত হবে| এক সময় যেখানে বন্য জন্তুরা রাজত্ব করত সেখানে লম্বা জলজ উদ্ভিদ জন্মাবে| 8 সেই সময় সেখানে একটা রাস্তা হবে| এই দীর্ঘ সড়ককে “পবিত্র সড়ক” নামে অভিহিত করা হবে| পাপী মানুষদের সেই পথ দিয়ে হাঁটতে অনুমতি দেওয়া হবে না| যে সব নির্বোধ লোকরা ঈশ্বরের কথা বিশ্বাস করে না তারা সেই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারবে না| এক মাত্র ভালো লোকরাই সেই পথে হাঁটার য়োগ্য হবে| 9 সেই রাস্তায় কোন বিপদ থাকবে না| মানুষকে আঘাত করার জন্য সেই রাস্তায় কোন সিংহ থাকবে না| সেই রাস্তায় কোন ভয়ঙ্কর জন্তু থাকবে না| ঈশ্বর দ্বারা যে সব লোকরা রক্ষা পেয়েছে তারাই ঐ পথ দিয়ে হাঁটবে| 10 ঈশ্বর তাঁর লোকদের মুক্ত করবেন| সেই সব লোক তাঁর কাছে ফিরে আসবে| সেই লোকরা যখন সিয়োনে আসবে তখন তারা খুশি হবে| মানুষগুলি চির কালের মতো সুখী হবে| তাদের সুখ হবে তাদের মাথার রাজমুকুটের মতো| আনন্দ ও খুশীতে তারা পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে| দুঃখ ও যন্ত্রণা তাদের কাছ থেকে দূরে, অনেক দূরে চলে যাবে|
1 যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের 14 বছরের রাজত্বকালে অশূরের রাজা সন্হেরীব যিহূদার দুর্ভেদ্য নগরগুলিতে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন| সন্হেরীব সেই শহরগুলিকে পরাস্ত করেন| 2 সন্হেরীব বিশাল সেনাদল সহ তাঁর সেনাপতিকে জেরুশালেমের রাজা হিষ্কিয়ের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন| সেনাপতি ও তার সেনাদল লাখীশ ত্যাগ করে জেরুশালেমে যায়| তারা ধোপার মাঠে যাওয়ার পথে যে উচ্চতর পুষ্করিনীটি আছে তার জলের নলের কাছে থেমেছিল| 3 জেরুশালেম থেকে সেনাপতির সঙ্গে কথা বলতে তিনজন মানুষ যায়| এরা ছিলেন হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকীম, আসফের পুত্র য়োযাহ ও শিব্ন| ইলিয়াকীম ছিলেন প্রাসাদের পরিচালক| য়োযাহ ছিলেন নথীরক্ষক এবং শিব্ন ছিলেন রাজপরিবারের সচিব| 4 সেনাপতি তাদের বলল, “অশূরের মহান রাজা যা বলেন তা হিষ্কিয়কে গিয়ে বল| কথাটা হল:তোমরা কাদের কাছ থেকে সাহায্য পাবার আশা কর? 5 আমি বলি, তোমরা যদি ক্ষমতা ও সুপরামর্শের সাহায্যে যুদ্ধ করার ওপর আস্থাশীল হও- সেটা তখন হবে অপ্রয়োজনীয়| ওসব কিছুই নয়, নিছকই বুলি মাত্র| এখন আমি জানতে চাই যে কার ওপর তোমরা এত নির্ভর করছ যে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে চাও? 6 তোমরা কি মনে কর মিশর তোমাদের সাহায্য করবে? মিশর ভাঙা লাঠির মতো| তোমরা যদি সমর্থনের জন্য সেই লাঠির ওপর ভর দাও, তবে এটা তোমাদের আঘাত করবে এবং তোমাদের হাতের মধ্যে গর্তের সৃষ্টি করবে| মিশরের রাজা ফরৌণের ওপর সাহায্যের বিষয়ে কেউই আস্থা রাখতে পারে না| 7 কিন্তু তোমরা হয়তো বলতে পারো, “আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরের ওপর সাহায্যের ব্যাপারে আস্থাশীল|” কিন্তু আমি জানি যেখানে লোকরা প্রভুর উপাসনা করত সেই সব বেদী এবং পবিত্র স্থানগুলিকে হিষ্কিয় ধ্বংস করেছে এবং হিষ্কিয় যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের বলছে, “তোমাদের শুধুমাত্র জেরুশালেমের এই বেদীটিতে উপাসনা করা উচিত্|” 8 যদি তোমরা এখনও যুদ্ধ করতে চাও তবে আমার মনিব অশূরদের সম্রাট তোমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন| আমি প্রতিশ্রুতি করছি তোমরা যদি ঘোড়ায় চড়ার জন্য যথেষ্ট মানুষ জোগাড় করতে পার তবে আমি তোমাদের যুদ্ধের জন্য 2,000 ঘোড়া দেব| 9 কিন্তু তবুও তোমরা আমার মনিবের নিথস্তরের কোন সেনানাযককেও পরাস্ত করতে পারবে না| তবু কেন তোমরা মিশরের রথসমূহ ও অশ্বারোহী সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর কর? 10 এখন তোমরা কি মনে কর আমি প্রভুর সাহায্য ছাড়াই এই দেশ ধ্বংস করতে এসেছি? প্রভু আমাকে বলেছেন, “এই দেশটি আক্রমণ কর এবং এটাকে ধ্বংস কর|” 11 তখন ইলিয়াকীম, শিব্ন ও য়োযাহ সেনাপতিকে বলেন, “অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে অরামীয় ভাষায় কথা বলুন| আমরা এই ভাষা বুঝি| যিহূদার ভাষায় আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, কারণ শহরের দেওয়ালের ওপর যে লোকরা বসে আছে তারা আপনার কথা শুনতে পাবে এবং বুঝতে পারবে|” 12 কিন্তু সেনাপতি বলল, “আমার প্রভু শুধুমাত্র তোমাদের ও তোমাদের মনিবের সঙ্গে কথা বলতে পাঠান নি| আমার মনিব প্রাচীরে বসে থাকা লোকদের সঙ্গেও কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন| ঐসব লোকদের জন্য যথেষ্ট খাদ্য ও জল থাকবে না| তোমাদের মতো, ওদেরও নিজেদের বর্য়্জ পদার্থ ও নিজেদের প্রস্রাব খেতে হবে|” 13 তখন সেনাপতি ইহুদী ভাষায় জোরে চেঁচিয়ে উঠল, 14 “মহান রাজা, অশূরের রাজার বার্তা শোন:হিষ্কিয়কে তোমাদের ঠকাবার সুযোগ দিও না| আমার ক্ষমতা থেকে সে তোমাদের বাঁচাতে পারবে না| 15 হিষ্কিয়ের কথা বিশ্বাস কর না| সে বলবে, ‘প্রভুর প্রতি আস্থাশীল হও! প্রভু আমাদের রক্ষা করবেন| প্রভু অশূরদের রাজাকে এই শহরকে পরাস্ত করতে দেবেন না|’ এসব কথা বিশ্বাস করবে না| 16 তোমরা হিষ্কিয়ের ওসব কথা শুনো না| অশূর রাজার কথা শোন| অশূর রাজা বলেন, “আমাদের চুক্তি করা উচিত্| তোমরা শহরের বাইরে আমার কাছে এসো| তখন সব মানুষই ঘরে ফেরার জন্য মুক্ত হবে| প্রত্যেক মানুষ তার বাগান থেকে দ্রাক্ষা খাওয়ার বিষয়ে মুক্ত হবে| এবং প্রত্যেক মানুষই তার ডুমুর গাছ থেকে ডুমুর খেতে পারবে| প্রত্যেক মানুষ তার নিজের কুযো থেকে জল পান করতে পারবে| 17 যত দিন পর্য়ন্ত আমি না আসব এবং তোমাদের প্রত্যেককে তোমাদের নিজেদের দেশের মতো একটি দেশে নিয়ে যেতে পারব, তত দিন পর্য়ন্ত তোমরা এটা করতে পারবে| সেই নতুন দেশে তোমরা ভাল শস্য ও নতুন দ্রাক্ষারস, রুটি ও দ্রাক্ষার বাগান পাবে|” 18 হিষ্কিয়কে তোমাদের প্রতারণা করতে দিও না| সে বলে, “প্রভু আমাদের রক্ষা করবে|” কিন্তু আমি তোমাদের জিজ্ঞাসা করি, অন্য দেশ সমূহের কোন দেবতা কি অশূরদের রাজার হাত থেকে তাদের দেশসমূহ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে? না! 19 হমাতের ও অর্পদের দেবতারা কোথায়? তারা পরাস্ত! সফর্বযিমের দেবতারা কোথায়? তারা পরাজিত হয়েছে| তারা কি শমরিয়াকে আমার ক্ষমতা থেকে রক্ষা করেছিল? না! 20 অন্য দেশসমূহের কোন দেবতা কি আমার হাত থেকে তাদের দেশ রক্ষা করেছে? না! প্রভু কি জেরুশালেমকে আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন? না!” 21 কিন্তু জেরুশালেমের লোকরা নীরব হয়ে থাকল যেহেতু রাজা হিষ্কিয় নির্দেশ দিয়েছেন সেহেতু তারা সেনাপতিকে কিছুই বলল না| কারণ রাজার আদেশ ছিল, “তাকে কিছু বোলো না|” 22 তারপর প্রাসাদের পরিচালক ইলিয়াকীম (হিল্কিয়ের পুত্র), রাজপরিবারের সচিব শিবন এবং নথীরক্ষক য়োযাহ (আসফের পুত্র) হিষ্কিয়ের কাছে গেলেন| তাঁরা নিজেদের দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য তাঁদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেললেন| তাঁরা হিষ্কিয়কে অশূরের যাবতীয় বক্তব্য শোনালেন|
1 রাজা হিষ্কিয় ঐসব ঘটনার কথা শুনেছিলেন| তারপর তিনি তাঁর দুঃখ দেখানোর জন্য নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন| তারপর হিষ্কিয় দুঃখের বিশেষ পোশাক পরলেন এবং প্রভুর মন্দিরে গেলেন| 2 হিষ্কিয় প্রাসাদের পরিচালক ইলিয়াকীম, রাজপরিবারের সচিব শিব্ন ও যাজকদের মধ্যে প্রবীণদের আমোসের পুত্র ভাব্বাদী যিশাইয়র কাছে পাঠালেন| তাঁরা দুঃখ প্রদর্শনের জন্য বিশেষ পোশাক পরেছিল| 3 এঁরা যিশাইয়কে বললেন, “রাজা হিষ্কিয় তাদের আদেশ দিয়েছেন যে আজ দুঃখ ও কষ্ট ভোগের বিশেষ দিন| আজকের দিনটি হবে খুব দুঃখের| আজকের দিনটা হবে সেই দিনটার মতো যখন কোন শিশুর জন্মানোর সময় হয়ে যাবে অথচ মায়ের শরীর থেকে বেরিয়ে আসার মতো বলশালী না হওয়ায সে বেরোতে পারবে না| 4 সেনাপতির মনিব, অশূরদের রাজা তাকে জীবন্ত ঈশ্বরকে বিদ্রূপ করতে পাঠিয়েছে| তোমাদের প্রভু ঈশ্বর হয়তো ঐসব বিষয়গুলি শুনতেও পারেন| প্রভু হয়তো প্রমাণও করবেন যে শএুরা ভুল করছে| সুতরাং যে সব লোকরা বেঁচে আছে তাদের জন্য প্রার্থনা কর|” 5 রাজা হিষ্কিয়ের আধিকারিকরা যিশাইয়র কাছে উপস্থিত হন| যিশাইয় তাদের বললেন, “তোমরা তোমাদের মনিব হিষ্কিয়কে জানাও: প্রভু বলেন, ‘সেনাপতির কথা শুনে ভীত হতে হবে না! অশূর রাজের “নাবালকরা” আমার নামে যেসব কুত্সা করেছে সেগুলি বিশ্বাস করবে না| 6 7 দেখো আমি অশূরের বিরুদ্ধে একটি আত্মা পাঠাব| অশূরের রাজা তার দেশের বিপদ সম্পর্কিত একটি সতর্কবার্তা পাবে| সুতরাং সে তার দেশে ফিরে যাবে| সেই সময় আমি তাকে তার দেশেই তরবারির আঘাতে হত্যা করব|”‘ 8 রাজা অশূর একটি খবর পেল| সেই খবরে বলা ছিল, “কূশদেশের রাজা তির্হকঃ তোমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছে|” সুতরাং অশূররাজ লাখীশ ত্যাগ করে লিব্না চলে গেলেন| সেনাপতি এই বার্তা পেয়ে লিব্নাতে যুদ্ধরত অশূররাজের কাছে চলে গেলেন| সে হিষ্কিয়ের কাছে দূত পাঠাল| দূতকে বলল, 9 10 “তুমি যিহূদা রাজ হিষ্কিয়কে এই কথাগুলি বল:তোমরা যে ঈশ্বরের ওপর আস্থাশীল তার দ্বারা বোকা হযো না| একথা বল না যে, “ঈশ্বর জেরুশালেমকে অশূররাজের কাছে পরাজিত হতে দেবে না| 11 তোমরা শুনেছ অশূরের রাজা অন্যান্য দেশের কি অবস্থা করেছে| সে তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে| তাহলে তোমরা কি রেহাই পাবে? না! 12 তাদের সেই দেবতারা কি তাদের রক্ষা করেছিল? না! আমার পূর্বপুরুষরাই তাদের সকলকে ধ্বংস করেছে| তারা গোষণ, হারণ, রেত্সফ এবং তলঃসর নিবাসী এদনের লোকদের ধ্বংস করেছে| 13 হমাতের রাজা কোথায়? অর্পদের রাজা কোথায়? সফর্বযিম নগরের রাজা কোথায়? কোথায় হেনা ও ইব্বার রাজা? তারা সকলেই বিনাশপ্রাপ্ত! তারা সকলেই ধ্বংস হয়েছে| 14 হিষ্কিয় বার্তাবাহকের হাত থেকে চিঠিগুলো নিয়ে পড়লেন| তারপর তিনি প্রভুর মন্দিরে গেলেন| তারপর তিনি চিঠিগুলো খুলে প্রভুর সামনে রাখলেন| 15 হিষ্কিয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা শুরু করলেন| বললেন: 16 সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আপনি করূব দূতদের ওপরে রাজার মত বসে রয়েছেন| আপনি, একমাত্র আপনিই পৃথিবীর সব রাজ্যের শাসক| আপনিই পৃথিবী ও স্বর্গের সৃষ্টিকর্তা| 17 প্রভু অনুগ্রহ করে আমার কথা শুনুন| প্রভু, চোখ মেলে বার্তাটির দিকে তাকান| জীবন্ত ঈশ্বর, আপনাকে অপমান করবার জন্য সন্হেরীব যেসব কথা লিখেছেন সেগুলি দয়া করে শুনুন| 18 এটাই সত্য, প্রভু| অশূরের রাজা সেই সব দেশগুলিকে বিনাশ করেছে| 19 সেই সব দেশের মূর্ত্তিদেরও অশূররাজ পুড়িয়েছে| কিন্তু তারা সত্যিকারের দেবতা ছিল না| তারা ছিল কেবল মানুষের তৈরি কাঠ ও পাথরের মূর্ত্তি| সেই কারণেই অশূররাজ তাদের ধ্বংস করতে পেরেছিল| 20 কিন্তু আপনিই প্রভু আমাদের ঈশ্বর! সুতরাং অশূররাজের কবল থেকে আমাদের রক্ষা করুন| তাহলে অন্যান্য সমস্ত দেশগুলিও জানতে পারবে যে আপনিই প্রভু, আপনিই একমাত্র ঈশ্বর| 21 তখন আমোসের পুত্র যিশাইয় হিষ্কিয়ের এই বার্তা পাঠালেন| বার্তাটিতে তিনি বললেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমরা অশূরের রাজা সন্হেরীবের বার্তার বিষয়ে আমার কাছে যে প্রার্থনা করেছিলে আমি তা শুনেছি|’ 22 “এটা হল সন্হেরীবের বিষয়ে প্রভুর বার্তা:অশূরের রাজা, সিয়োনের কুমারী কন্যা (জেরুশালেম) তোমাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে না| তোমার জন্য সে হাসে| জেরুশালেম কন্যা, তোমাকে নিয়ে সে মজা করে| 23 কিন্তু তুমি কাকে অপমান ও বিদ্রূপ করেছ? কার বিরুদ্ধে তুমি কথা বলেছ? তুমি ইস্রায়েলের পবিত্রতমরই বিরোধী ছিলে| তুমি এমন হাবভাব করলে যেন তুমি ঈশ্বরের চেয়ে অনেক ভালো| 24 তুমি তোমার আধিকারিকদের প্রভু, আমার ঈশ্বরকে বিদ্রূপ করতে পাঠিয়েছিলে| তুমি বলেছিলে, “আমি খুব ক্ষমতাসম্পন্ন| আমার বহু যুদ্ধযান আছে| আমার শক্তি দিয়েই আমি লিবানোনকে পরাস্ত করেছিলাম| আমি লিবানোনের সর্ব্বোচচ পর্বতে আরোহণ করেছিলাম| আমি লিবানোনের মহান গাছগুলিকে কেটে ফেলে দিয়েছিলাম| আমি উচ্চতম পর্বতগুলিতে এবং অরণ্যের গভীরতম অংশে এসেছিলাম| 25 আমি কূপসমূহ খনন করেছিলাম এবং নতুন জায়গা থেকে জলপান করেছিলাম| আমি আমার হাতের তালু দিয়ে মিশরের নদীকে শূন্য করে দিয়েছিলাম এবং ঐ দেশের ওপর হেঁটে গিয়েছিলাম|” 26 আমি যা বলেছিলাম তুমি কি তা শোননি? “আমি (ঈশ্বর) অনেকদিন আগে পরিকল্পনা করেছিলাম| আমি প্রাচীনকালেই পরিকল্পনা করেছিলাম| এবং এখন আমি তা ঘটাব| আমি তোমাদের শক্তিশালী শহরগুলিকে ভেঙে ফেলতে এবং সেগুলিকে পাথরের স্তূপে পরিণত করতে দিয়েছিলাম| 27 এই শহরগুলির লোকগুলোর কোন ক্ষমতা ছিল না| তারা ছিল ভীত ও বিভ্রান্ত| তাদের অবস্থা এমন হয়েছিল যেন এখুনি ওদের প্রায ঘাসের মত কেটে ফেলা হবে| বাড়ির ফাটলে গজিযে ওঠা ঘাস যেমন বড় হবার আগে মরে যায়, তেমনিই শহরবাসীদের অবস্থা ছিল| 28 আমি তোমাদের যুদ্ধের বিষয় সব জানি| আমি তোমাদের বিশ্রামের বিষয়েও জানি| যখন তোমরা যুদ্ধে যাও তাও আমি জানি| আমি জানি কখন তোমরা যুদ্ধ থেকে ফিরে আস| কখন তোমরা আমার ওপর রেগে গিয়েছিলে তাও আমি জানি| 29 হ্যাঁ, তোমরা আমার ওপর রেগে ছিলে| আমি তোমাদের গর্বিত বিদ্রূপ শুনেছি| তাই আমি তোমাদের নাকে লাগাম দেব| এবং মুখে লাগাব ধাতব লাগাম| তারপর তোমরা যে পথ দিয়ে এসেছ সেই পথ দিয়েই তোমাদের ফেরাব|”‘ 30 তখন প্রভু হিষ্কিয়কে বললেন, “আমি তোমাকে একটি চিহ্ন দেখাব| সেই চিহ্ন প্রমাণ করবে যে এই কথাগুলি সত্যি| তোমরা বীজ বপন করতে সক্ষম ছিলে না, অতএব এই বছর তোমরা গত বছরের শস্য থেকে আপনিই জমানো শস্য খাবে| কিন্তু তিন বছরেই তুমি তোমার নিজের কোন বীজ থেকেই খাবার মতো ফসল পাবে| তুমিই সেই বীজগুলি লাগাবে এবং যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্যশস্য পাবে| তুমি দ্রাক্ষাগাছ রোপণ করবে এবং তার ফল খাবে| 31 “যিহূদা পরিবারের সদস্যরা যারা পালিয়ে গিয়েছিল এবং যারা জীবিত রয়েছে তারা আবার বাড়তে থাকবে| তারা হবে সেই সব গাছেদের মত যাদের শিকড় মাটির অনেক গভীরে থাকে আর ফল থাকে মাটির ওপরে| 32 কারণ এখনও কেউ কেউ বেঁচে থাকবে| তারা জেরুশালেমের বাইরে চলে যাবে| সিয়োন পর্বত থেকে জীবিতরা আসতে থাকবে|” সর্বশক্তিমান প্রভুর গভীর ভালোবাসা এইসব ঘটাবে| 33 তাই প্রভু অশূরের রাজার বিষয়ে একথা বলেন:“সে এই শহরে আসবে না| সে এই শহরের দিকে তীর ছুঁড়বে না| সে এই শহরে তার বর্ম আনবে না| এই শহরকে আক্রমণ করতে সে ঢিবি বানাবে না| 34 সে তার আসার পথে ফিরে যাবে| সে এই শহরে ফিরে আসবে না| প্রভু এই সব বলেন! 35 আমি এই শহরটিকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেব| আমি আমার নিজের জন্য এবং সেবক দাযূদের জন্য এসব করব|” 36 সেই রাতে প্রভুর দূত অশূরের শিবিরে গিয়ে 1,85,000 লোককে হত্যা করলেন| সকালে উঠে লোকেরা দেখল যে চারিদিকে শবদেহ ছড়ানো| 37 তাই অশূররাজ সন্হেরীব নীনবীতে ফিরে গিয়ে সেখানেই বসবাস করা শুরু করল| 38 এক দিন সন্হেরীব তার দেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে গিয়ে তার উপাসনা করছিল| সেই সময় তার দুই পুত্র অদ্রম্মেলক ও শরেত্সর তাকে তরবারির আঘাতে হত্যা করল| তারপর তারা অরারট দেশে পালাল| আর সন্হেরীব পুত্র এসর-হদ্দোন অশূরের নতুন রাজা হল|
1 সেই সময় হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে মৃতপ্রায হয়ে পড়েছিলেন| আমোসের ভাব্বাদী যিশাইয় তাঁকে দেখতে যান| যিশাইয় রাজাকে বললেন, “প্রভু আমাকে এই কথাগুলি আপনাকে বলতে বলেছেন: ‘তুমি শীঘ্র মারা যাবে| সুতরাং তুমি তোমার পরিবার পরিজনকে জানিয়ে যাও তোমার মৃত্যু হলে তাদের কি করা উচিত্| তুমি আর সুস্থ হয়ে উঠবে না|”‘ 2 হিষ্কিয় উপাসনা গৃহের দিকে মুখ করে প্রার্থনা শুরু করলেন| তিনি বললেন, 3 “প্রভু স্মরণ করে দেখুন আমি সর্বান্তঃকরণে আপনার প্রকৃত সেবা করেছি| আপনি যেসব জিনিসকে ভাল বলেছেন আমি কেবল সে সবই করেছি|” তারপর হিষ্কিয় কান্নায ভেঙে পড়লেন| 4 যিশাইয় প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলেন: 5 “হিষ্কিয়ের কাছে গিয়ে তাকে বল যে প্রভু, তোমার পূর্বপুরুষ দাযূদদের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি| আমি তোমার চোখের জল দেখেছি, তাই আমি তোমার আযু আরো 15 বছর বাড়িয়ে দেব| 6 আমি তোমাকে এবং এই শহরকে অশূর রাজের হাত থেকে রক্ষা করব|”‘22কিন্তু হিষ্কিয় যিশাইয়কে জিজ্ঞেস করলেন, “প্রভুর কাছ থেকে এমন কি সঙ্কেত পেয়েছেন যে তার থেকে প্রমাণিত হয় আমি আবার ভালো হয়ে উঠব? কি সেই সঙ্কেত যার থেকে বোঝা যাবে যে আমি আবার প্রভুর মন্দিরে যেতে সক্ষম হব?” 7 প্রভু যা যা করবেন বলেছিলেন তার জন্য এই সেই প্রভুর সঙ্কেত চিহ্ন: 8 “তোমার সময় নির্ণায়ক সৌরঘড়ি আহসের সিঁড়ির দিকে তাকাও| দশ পা পিছিযে আসার জন্য আমি সিঁড়িতে ছায়া তৈরী করছি| সূর্য়ের ছায়া দশ ধাপ ফিরে যাবে যেখানে আগে সেটি ছিল|”21সেই সময় যিশাইয় হিষ্কিয়কে বললেন, “তুমি ডুমুর ফল থেঁতো করে তোমার ক্ষত ঘাযের ওপর রাখ| তারপর তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে|” 9 হিষ্কিয় সুস্থ হওয়ার পর চিঠি লেখেন| চিঠিটি হল: 10 আমি মনে মনে বলেছিলাম বৃদ্ধ হবার জন্য বাঁচব| তবে সেই সময়টা ছিল আমার মৃত্যুপথযাত্রী লোকদের মতো পাতালের ফটকে যাওয়ার সময়| এখন আমার সমস্ত সময় আমি সেখানেই অতিবাহিত করব| 11 সুতরাং আমি বলেছিলাম: “জীবিতদের দেশে আমি আর কখনও প্রভু ইযাকে দেখতে পাবো না| আমি আর কখনও পৃথিবীতে লোকদের জীবিত দেখতে পাব না| 12 আমার জীবনকে তছনছ করে আমার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে| তাঁতী যেমন তাঁত থেকে কাপড়ের টুকরো কেটে নেয তেমন করে আমি আমার জীবনকে কেটে ছোট করেছি| এক দিনেই আপনি আমায় শেষ করে দিয়েছেন| 13 সারা রাত ধরে আমি সিংহের মত চিত্কার করে কেঁদেছিলাম| কিন্তু সিংহের হাড় খাবার মত আমার সব আশা-আকাঙ্খা ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল| মাত্র এক দিনে আপনি আমার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিযেছিলেন| 14 আমি একটি ঘুঘুর মতো কেঁদেছিলাম, আমার চোখগুলি ক্লান্ত হয়েছিল, কিন্তু তবুও আমি স্বর্গের দিকে তাকিযে ছিলাম| আমার প্রভু, “মাত্র একদিনের মধ্যে আপনি আমার জীবনের পরিসমাপ্তি এনেছেন| আমি খুবই সংকটের মধ্যে রয়েছি| আমাকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিন|” 15 আমি কি বলতে পারি? আমার প্রভু আমাকে বলেছিলেন কি কি ঘটবে এবং তিনিই সে ব্যক্তি যিনি সে সব ঘটাবেন! এইসব সমস্যা বরাবরই আমার আত্মায রয়েছে| তাই গোটা জীবন ধরেই আমি এখন নম্র হব| 16 প্রভু আমার এই কঠিন সময়কে আমার আত্মার পুনরুজ্জীবনের জন্য ব্যবহার করুন| আমার আত্মাকে শক্ত ও স্বাস্থ্য়বান করতে সহায়তা দান করুন| আমাকে সুস্থ হতে সাহায্য করুন| আমাকে পুনরায় বাঁচতে সাহায্য করুন| 17 দেখ আমার সমস্যা চলে গেছে| এখন আমার শান্তি আছে| আপনি আমাকে খুব ভালবাসেন| আপনি আমাকে কবরে পচতে দেননি| আপনি আমার সব পাপকে ক্ষমা করে দিয়েছেন| দূরে ফেলে দিয়েছেন| 18 মৃত লোকরা আপনার প্রশংসার গান গায না| পাতালে লোকরা আপনার প্রশংসা করে না| মৃত লোকরা সাহায্যের জন্য আপনার উপর বিশ্বাস রাখে না| তারা মাটির ভেতরে একটা গর্তে চলে যায়| আর, কখনও কথা বলতে পারে না| 19 লোকরা যারা আজ আমার মত বেঁচে আছে, তারাই আপনার প্রশংসা করে| একজন পিতার তার সন্তানদের বলা উচিত্ যে আপনার প্রতি আস্থা রাখা যায়| 20 তাই আমি বলি: “প্রভু আমাকে রক্ষা করেছেন| তাই আমরা প্রভুর মন্দিরে জীবনভর গান গেযে এবং গান বাজিযে যাব|” 21 22
1 ঐ সময়, বলদনের পুত্র মরোদক-বলদন বাবিলের রাজা ছিলেন| তিনি হিষ্কিয়ের কাছে চিঠি ও উপহার পাঠান| কারণ তিনি শুনেছিলেন হিষ্কিয় অসুস্থ থাকার পর সুস্থ হয়ে উঠছেন| 2 এই ঘটনা হিষ্কিয়কে খুবই খুশী করে| তাই তিনি মরোদক-বলদনের দূতদের তাঁর কোষাগারের সব মূল্যবান জিনিস দেখালেন| হিষ্কিয় তাঁদের দেখালেন সোনা, রূপো, মশলা ও মূল্যবান গন্ধ দ্রব্য| তিনি তাঁর অস্ত্রাগারও তাঁদের দেখালেন| তাঁর যা কিছু ছিল সবই দেখালেন| তাঁর প্রাসাদে ও রাজ্যে যে সব জিনিষ ছিল তিনি সব তাঁদের দেখালেন| 3 তখন ভাব্বাদী যিশাইয় হিষ্কিয়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “ঐসব লোকরা কি বলল? তারা কোথা থেকে আপনার কাছে এল?”হিষ্কিয় বলেন, “সুদূর বাবিল থেকে ওরা আমাকে দেখতে এসেছে|” 4 তখনই যিশাইয় জানতে চাইলেন “আপনার গৃহে তারা কি কি দেখল?”হিষ্কিয় বললেন, “তারা আমার প্রাসাদের সব কিছুই দেখেছে| আমি তাদের সব সম্পদই দেখিয়েছি|” 5 তখন যিশাইয় হিষ্কিয়কে বললেন: “সর্বশক্তিমান প্রভুর বাণী শুনুন| 6 ‘আপনার ও আপনার পূর্বপুরুষদের সব সম্পদই যা সংগৃহীত হয়েছিল এবং দীর্ঘকাল ধরে রক্ষিত ছিল তা সেই দিন বাবিলে চলে যাবে| কিছুই থাকবে না!’ সর্বশক্তিমান প্রভু এসব বলেছেন| 7 আর আপনার নিজের ছেলেদেরও বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে| তারা বাবিলের রাজার প্রাসাদের কর্মচারী হবে| কিন্তু তারা হবে নপুংসক|” 8 তখন হিষ্কিয় যিশাইয়কে বললেন, “প্রভুর এই বার্তাটি খুব ভালো|” হিষ্কিয় এটা বলেছিলেন কারণ তিনি ভেবেছিলেন “আমি যতক্ষণ রাজা থাকব ততক্ষণ প্রকৃত শান্তি ও নিরাপত্তা থাকবে|”
1 তোমাদের ঈশ্বর বলেন, “স্বস্তি, আমার লোকরা স্বস্তিতে থাকো! 2 জেরুশালেমের প্রতি দয়ালু হয়ে কথা বল| জেরুশালেমকে বল, ‘তোমার সেবা করার সময় শেষ| তোমার পাপের মূল্য তুমি দিয়েছ|”‘ জেরুশালেম যত পাপ করেছে তার দ্বিগুণ শাস্তি প্রভু তাকে দিয়েছেন| 3 শোন একজন মানুষ চিত্কার করছে! “মরুর মধ্যেও প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত কর! মরুস্তরে আমাদের ঈশ্বরের জন্য পথ তৈরি কর! 4 প্রত্যেক উপত্যকা পূর্ণ কর| প্রত্যেক পাহাড় পর্বতকে কর সমতল| আঁকা-বাঁকা রাস্তাকে সোজা কর| অসমান জমিকে মসৃণ কর| 5 তখনই প্রভুর মহিমা বুঝতে পারবে| সবাই এক সঙ্গে দেখতে পাবে প্রভুর মহিমা| হ্যাঁ, প্রভু নিজেই বলেছেন এসব কথা!” 6 একটি কণ্ঠস্বর বলল, “কথা বল!” তখন লোকে বলল, “আমাদের কি বলা উচিত্?” ঐ কণ্ঠস্বর বলল, “মানুষ চির কাল বাঁচে না, তারা আসলে ঘাসের মতো| তাঁদের ধার্ম্মিকতা বুনো ফুলের মতো| 7 প্রভুর কাছ থেকে আসা একটি শক্তিশালী বাতাস ঘাসের ওপর দিয়ে বয়ে যায়| ঘাস মরে যায়, বুনো ফুল ঝরে পড়ে|” 8 হ্যাঁ সমস্ত লোক ঘাসের মতো| ঘাস মরে, বুনো ফুল ঝরে পড়ে| কিন্তু আমাদের ঈশ্বরের বাক্য চির কাল থেকে যায়|” 9 সিয়োনের প্রতি সুসমাচারের বার্তাবাহক, পর্বতের ওপর থেকে চিত্কার করে সুসমাচার ঘোষণা করে দাও| জেরুশালেমের প্রতি সুসমাচারের বার্তাবাহক, ভয় পেও না, চেঁচিয়ে কথা বল! যিহূদায় সমস্ত শহরে এই খবর ঘোষণা করে দাও: “দেখ, এখানে তোমাদের ঈশ্বর আছেন| 10 প্রভু, আমার সদাপ্রভু ক্ষমতাসহ ফিরে আসছেন| সব মানুষকেই শাসন করতে তিনি তাঁর ক্ষমতা ব্যবহার করবেন| দেখ, তাঁর পুরস্কার তাঁর সঙ্গে রয়েছে এবং তাঁর মজুরি তাঁর সামনে রয়েছে| 11 মেষপালক যে ভাবে তার মেষদের নেতৃত্ব দেয় প্রভুও তেমনি তাঁর লোকেদের নেতৃত্ব দেবেন| নিজের বাহু দিয়ে প্রভু একত্রিত করবেন মেষদের| তিনি মেষশাবকদের কোলে তুলে রাখবেন| তাদের মায়েরা প্রভুর পিছন পিছন হাঁটবে| 12 নিজের হাতে কে সমুদ্র মেপেছেন? আকাশ মাপতে কে তাঁর হাত ব্যবহার করেছেন? পৃথিবীর ধূলিকণা মাপতে কে তাঁর পাত্র ব্যবহার করেছেন? কে দাঁড়িপাল্লায় পাহাড় পর্বত ওজন করেছেন? প্রভু এসব করেছেন! 13 প্রভুর আত্মার কি করা উচিত্ কেউ কখনও বলেনি| যে সব কাজ প্রভু করেছেন তা কিভাবে করতে হবে তা কোন ব্যক্তি প্রভুকে পরামর্শ দেয়নি| 14 প্রভু কি কারও কাছে সাহায্য চেয়েছেন? কোন ব্যক্তি কি প্রভুকে ন্যায়পরায়ণ হতে শিখিযেছে? কেউ কি কখনও প্রভুকে জ্ঞান দান করেছে? কেউ কি কখনও প্রভুকে জ্ঞানী করে তুলেছে? না! এই সব প্রভু নিজেই জানতেন| 15 দেখ, পৃথিবীর সব দেশই একটি বালতিতে ছোট এক ফোঁটা জলের মত| প্রভু যদি তাঁর দূরবর্তী দেশগুলিকে এনে ওজন মাপার য়ন্ত্রে চাপান তাদের অবস্থা হবে ধূলিকণার মত| 16 লিবানোনের সব গাছও প্রভুর জন্য জ্বালানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়| উত্সর্গের জন্য বধ হতে লিবানোনের সব পশুও যথেষ্ট নয়| 17 ঈশ্বরের তুলনায়, পৃথিবীর সমস্ত জাতিগুলি কিছুই নয়| ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনা কর| পৃথিবীর সব দেশই মূল্যহীন| 18 ঈশ্বরের সঙ্গে কারো কি তুলনা করতে পার! না| তুমি কি ঈশ্বরের ছবি অাঁকতে পার? না| 19 কাঠ অথবা ধাতু দিয়ে কেউ কেউ মূর্ত্তি বানায়| আর সেই মূর্ত্তিকেই তারা দেবতা বলে মনে করে| এক জন শ্রমিক মূর্ত্তি বানায়| অন্য শ্রমিকরা সোনা-রূপা দিয়ে মূর্ত্তির জন্য অলঙ্কার বানায়| 20 আসল অংশের জন্য তারা বেছে নেয বিশেষ কাঠ, কারণ বিশেষ ধরণের কাঠের পচন ধরে না| তারপর তারা দক্ষ কাঠমিস্ত্রীর খোঁজ করে| তারপর ছুতোর মিস্ত্রী একটি “মূর্ত্তি” তৈরী করে যেটা পড়ে যাবে না| 21 তুমি নিশ্চয়ই আসল সত্যটা জানো, জানো না কি? তোমাকে নিশ্চয়ই অনেক বছর আগে কেউ বলেছে! তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ কে পৃথিবীটা তৈরি করেছে! 22 প্রভুই সত্যিকারের ঈশ্বর! তিনি পৃথিবীর বৃত্তের ওপর বসে থাকেন| তাঁর তুলনায় মানুষ ঘাস ফড়িং-এর মতো| বস্ত্রখণ্ডের মতো তিনি আকাশকে মেলে ধরেন| আকাশের তলায় বসার জন্য তিনি তাকে তাঁবুর মত বিছিযে ধরেন| 23 তিনি শাসকদের গুরুত্বহীন করেন, তিনি পৃথিবীর বিচারকদের করেন সম্পূর্ণ মূল্যহীন| 24 সেই সব শাসকরা চারা গাছের মতো| তাদের মাটিতে রোপন করা হয়, কিন্তু শিকড় গাড়ার আগেই ঈশ্বর সেই সব চারা “গাছদের” ওপর দিয়ে বয়ে যান এবং সেই সব চারা গাছ মরে শুকনো হয়ে যায়| বাতাস তাদের খড়কুটোর মতো উড়িযে নিয়ে যায়| 25 পবিত্র ঈশ্বর বলেন: “আমার সঙ্গে কারও তুলনা করতে পারবে কি? না! কেউ আমার সমান নয়| 26 আকাশের দিকে তাকাও| তারাগুলি তৈরী করেছে কে? আকাশের “সেনাদের” সৃষ্টিকর্তা কে? কে সব তারাদের নাম জানে? সত্যিকারের ঈশ্বর প্রচণ্ড শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান, তাই কোন তারা হারিযে যায় না|” 27 যাকোবের লোকরা, এসবই সত্য! ইস্রায়েল, তোমারও এই সব বিশ্বাস করা উচিত্! তবু কেন তোমরা বলছ: “আমরা কেমন ভাবে জীবনযাপন করছি তা প্রভু দেখতে পাবেন না এবং আমাদের শাস্তি দিতে পারবেন না?” 28 তোমরা নিশ্চয়ই শুনেছো এবং জানো যে প্রভু ঈশ্বর অত্যন্ত জ্ঞানী| তিনি যা জানেন মানুষ তা শিখতে পারে না| প্রভু কখনও ক্লান্ত হন না এবং তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজন নেই| প্রভু পৃথিবীর সমস্ত প্রত্যন্ত অঞ্চল সৃষ্টি করেছেন| তিনি চির কাল বেঁচে থাকবেন| 29 প্রভু দুর্বলকে সবল হতে সাহায্য করেন| ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান করেন| 30 যুবকরাও ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং তাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়| তারাও মাটিতে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়| 31 কিন্তু প্রভুতে বিশ্বাসী লোকরা ঈগল পাখির নতুন ডানা গজানোর মতো আবার শক্তিশালী হয়ে ওঠে| এই সব লোকরা শত দৌড়লেও দুর্বল হয় না, ক্লান্ত হয়ে পড়ে না|
1 প্রভু বলেন, “দূরবর্তী দেশগুলি শান্ত হও, আমার কাছে এসো| জাতিগুলি পুনরায় শক্তিমান হয়ে উঠুক| আমার কাছে এসে কথা বল| আমরা এক সঙ্গে বসে ঠিক করে নেব কে ঠিক কেই বা বেঠিক| 2 আমাকে এইসব প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: পূর্ব থেকে আসা লোকটিকে কে জাগিয়েছিল? তিনি যেখানেই যান, ন্যায় তাঁর সঙ্গে আছে| তিনি তাঁর তরবারি দিয়ে জাতিগুলিকে পরাস্ত করেন| তারা ধূলো বালিতে পরিণত হয়| তিনি তার ধনুকের সাহায্য রাজাদের পরাজিত করেন| তারা বাতাসে উড়ে যাওয়া খড়কুটোর মতো পালিয়ে যায়| 3 তিনি সেনাদের ধাওযা করেন, কিন্তু কখনও আঘাত পান না| যেখানে তিনি কখনও যাননি সে সব স্থানে যাবেন| 4 এসব ঘটনার কারণ কে? কে এই সব করেছেন| কে প্রথম থেকেই সব মানুষকে ডাক দিয়েছিল? আমি প্রভু, এসব করেছিলাম| আমি প্রভু, আমিই প্রথম, আমিই শেষ| 5 তোমরা, দূরবর্তী স্থানের লোকরা তাকাও| ভীত হও! তোমরা পৃথিবীর দূরবর্তী স্থানের লোকেরা ভয়ে কাঁপো| এখানে এসে আমার কথা শোন|” এবং তারা এসেছিল| 6 “শ্রমিকেরা একে অন্যকে সাহায্য করে| শক্তিশালী হতে একে অন্যকে উত্সাহ দেয়| 7 এক জন কর্মী মূর্ত্তি বানানোর জন্য কাঠ কাটে| সে স্বর্ণকারদের উত্সাহিত করে| অন্য শ্রমিক হাতুড়ি দিয়ে ধাতুকে মসৃণ করে তোলে| তারপর সেই কর্মীটি অন্য কর্মীকে ভারী ধাতব খোপের মধ্যে ধাতুটি ঢেলে তাকে পিটিযে বিভিন্ন রকমের জিনিস তৈরি করার জন্য উত্সাহিত করে| ঐ শেষ শ্রমিকটি ধাতব কাজের সম্বন্ধে বলে: ‘এইটি ভালো| এটি খুলে আসবে না|’ তারপর সে মূর্ত্তিটিকে পেরেক দিয়ে কোন একটি ভিত্তির ওপর এমন ভাবে বসিযে দেয় যাতে সেটা নড়তে বা পড়তে না পারে!” 8 প্রভু বলেন: “ইস্রায়েল, তুমি আমার দাস| যাকোব, তোমাকে আমি বেছে নিয়েছি| তুমি অব্রাহামের পরিবার থেকে এসেছ যে আমাকে ভালবাসত| 9 তুমি বহু দূরের দেশে ছিলে, কিন্তু আমি তোমার কাছে পৌঁছে যাই| আমি তোমাকে দূরস্থান থেকে ডেকেছিলাম| আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তুমি আমার সেবক| আমি তোমাকে বেছে নিয়েছি এবং আমি তোমাকে বাতিল করিনি| 10 চিন্তিত হযো না, আমি তোমার সঙ্গে আছি| ভীত হবে না, আমি তোমার ঈশ্বর| আমি তোমাকে শক্তিশালী করব| তোমাকে সাহায্য করব| তোমাকে আমার ভাল দক্ষিণ হস্ত দিয়ে সমর্থন দেব| 11 দেখো, কিছু লোক তোমার ওপর রুদ্ধ| কিন্তু তারা লজ্জিত হবে| যারা তোমার সঙ্গে তর্ক করে তারা হেরে যাবে এবং অদৃশ্য হবে| 12 যারা তোমার বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের তুমি খুঁজবে কিন্তু দেখতে পাবে না| যে সব লোক তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল তারা সকলেই পুরোপুরি ভাবে অদৃশ্য হয়ে যাবে| 13 আমি প্রভু তোমার ঈশ্বর, তোমার ডান হাত ধরে আমি আছি| এবং আমি তোমাকে বলি: ভীত হবে না! আমি তোমাকে সাহায্য করব| 14 মূল্যবান যিহূদা ভীত হবে না! আমার প্রিয ইস্রায়েলের লোকরা ভয়চকিত হবে না! আমি সত্যিই তোমাদের সাহায্য করব|” প্রভু নিজেই ঐসব বলেন| ইস্রায়েলের পবিত্রতম (ঈশ্বর) যিনি রক্ষাকর্তা তিনিই এই সব বলেছেন: 15 “দেখ, আমি তোমাকে একটা নতুন শস্য মাড়া য়ন্ত্রের মতো বানিয়েছি| সেই য়ন্ত্রের অনেকগুলো ধারালো ছুরি আছে| কৃষকরা এই সব ব্যবহার করে খোসা ভাঙার কাজে, যাতে তারা শস্য থেকে আলাদা হতে পারে| তুমি পর্বতগুলিকে ঐ শস্য মাড়ার মতো ভেঙে ফেলবে| 16 তুমি তাদের বাতাসে ছুঁড়ে ফেলবে| বাতাস তাদের বয়ে নিয়ে দূরে চলে যাবে এবং বিক্ষিপ্ত করবে| তখন তুমি খুশী হবে এবং প্রভুর মধ্যে স্থিত হয়ে আনন্দ করবে| ইস্রায়েলের পবিত্রতম ঈশ্বরের জন্য তুমি গর্বিত হবে|” 17 “দরিদ্র ও অভাবী লোকরা জলের জন্য খোঁজ করবে| কিন্তু তারা খুঁজে পাবে না| তারা তৃষ্ণার্ত, তাদের জিহবা শুষ্ক| আমি, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাদের প্রার্থনার জবাব দেব| আমি তাদের ত্যাগ করব না, মরতে দেব না| 18 আমি শুকনো পাহাড়ের ওপর দিয়ে নদীকে প্রবাহিত করাব| উপত্যকায় উপত্যকায় বইয়ে দেব জলভরা নদী| মরুকে করে তুলব জলে ভরা হ্রদ| জলপ্রবাহ বয়ে যাবে শুকনো ভূমিতে| 19 মরুভূমিতে গাছ জন্মাবে| সেখানে থাকবে এরস, বাবলা, জলপাই, তাশূর, দেবদারু ও পাইন গাছ| 20 লোকরা এই জিনিসগুলি দেখবে| এবং তারা জানতে পারবে প্রভুই এই কর্ম করেছেন| মানুষ এই সব দেখতে পাবে, তারা বুঝতে শুরু করবে যে ইস্রায়েলের পবিত্রতম (ঈশ্বর) এগুলি সৃষ্টি করেছেন|” 21 যাকোবের রাজা প্রভু বলেন, “এস| আমাকে তোমার যুক্তি বল| আমাকে তোমরা প্রমাণ দেখাও এবং আমরা ঠিক করে দেব কোনটা সঠিক| 22 তোমাদের মূর্ত্তিদের এসে আমাদের বলা উচিত্ কি ঘটেছে|“শুরুতে কি কি ঘটেছিল? ভবিষ্যতে কি ঘটবে? বলুক আমাদের! আমরা তাদের কাছ থেকে শুনব| তখন আমরা জানতে পারব পরে কি ঘটবে| 23 পরে কি কি ঘটবে তা তোমরা আমাদের জানাও| তারপর আমরা তোমাদের সত্যিকারের দেবতা বলে বিশ্বাস করব| কিছু কর! ভাল না হয় মন্দ কিছু একটা করে দেখাও! তখন আমরা মেনে নেব তুমি জীবন্ত এবং তোমাকেই আমরা মেনে চলব| 24 “দেখো| তোমরা মূর্ত্তিরা আসলে কিছুই নও| তোমরা কিছুই করতে পারবে না! যে কোন অকর্মণ্য লোকই তোমার পূজা করতে চাইবে|” 25 “আমি উত্তর দিকে একটি লোককে জাগালাম| সে পূর্বদিক থেকে, যেখানে সূর্য়োদয হয়, সেখান থেকে আসছে| সে আমার নাম জপ করে| যে মানুষ ঘট তৈরী করে সে ভিজে মাটির ওপর দিয়ে হাঁটে| ঠিক একই রকম ভাবে এই বিশেষ লোকটি রাজাদের পদদলিত করে|” 26 কে আমাদের এই সব ঘটার আগেই বলেছিল? তাকেই আমাদের ঈশ্বর বলা উচিত্| তোমাদের মধ্যে কোন মূর্ত্তি কি এইসব বলেছিল? না! সেই সব মূর্ত্তিদের কেউই কিছু বলতে পারে নি| সেই সব মূর্ত্তিরা কোন কথাই বলতে পারে নি| তারা তোমাদের কোন কথা শুনতেও পায় নি| 27 আমি প্রভু, সর্বপ্রথম সিয়োনকে এই সব ঘটনার কথা বলি| আমি জেরুশালেমে এই বার্তা নিয়ে এক জন বার্তাবাহক পাঠিয়েছিলাম: “দেখ তোমাদের লোকরা ফিরে আসছে|” 28 আমি ঐসব মূর্ত্তিদের দেখেছিলাম| তারা কেউই কোন কিছু বলার মত যথেষ্ট জ্ঞানী নয়| আমি তাদের প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু তারা কোন উত্তর দিতে পারেনি| 29 এই সব দেবতারা আসলে কিছু নয়| তারা কিছুই করতে পারে না| সেই সব মূর্ত্তিগুলি আসলে একেবারে মূল্যহীন|
1 “আমি আমার দাসের দিকে তাকাই! আমি তাকে সমর্থন করি| সে হচ্ছে সেই জন, যাকে আমি বেছে নিয়েছিলাম| আমি তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট| তার ওপর আমি আমার আত্মা রেখেছি| সে ন্যায়সঙ্গত ভাবে জাতিসমূহের বিচার করবে| 2 পথে-ঘাটে সে চিত্কার করবে না| সে তীব্র চিত্কার করবে না অথবা তার গলা লোকদের মধ্যে শোনা যাবে এমন করবে না| 3 সে ভদ্র হবে| জলাশযের ধারে গজিযে ওঠা আগাছা সে কখনও ভাঙবে না| দুর্বল আগুনকেও সে কখনও নিভিযে দেবে না| সে ন্যায় ভাবে বিচার করবে এবং সত্যকে বের করবে| 4 পৃথিবীতে ন্যায় বিচার না আনা পর্য়ন্ত সে দুর্বল হবে না, অথবা নিষ্পেষিত হবে না| দূরবর্তী স্থানের লোকরা তার শিক্ষামালায় আস্থাবান হবে|” 5 প্রভু প্রকৃত ঈশ্বর, তিনিই এই সব বলেছেন| প্রভু আকাশ বানিয়েছেন| তিনি আকাশকে সারা বিশ্বের ওপর ছড়িয়ে দিয়েছেন| তিনি পৃথিবীর সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা| তিনি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন| পৃথিবীর ওপর যারা হেঁটে বেড়ায তাদের প্রত্যেক লোককে তিনি একটি আত্মা দেন| 6 “আমি তোমাদের প্রভু, সঠিক কাজ করতে তোমাদের ডেকেছিলাম| আমি তোমাদের হাত ধরেছি| আমি তোমাদের রক্ষা করেছি এবং তোমাদের মাধ্যমে আমি লোকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি| তুমি সমস্ত জাতিগুলির জন্য একটি আলোস্বরূপ হবে| 7 তুমি অন্ধ লোকের চোখ খুলে দেবে এবং তারা সব কিছু দেখতে পাবে| বহুলোক কয়েদখানায বন্দী; তুমি তাদের মুক্ত করে দেবে| বহুলোক বাস করে অন্ধকারে, জেলের থেকে বাইরে আসবার জন্য তাদের তুমি নেতৃত্ব দেবে| 8 “আমিই প্রভু| আমার নাম য়িহোবা| আমার মহিমা আমি অপরকে দেব না| যে মহিমা আমার পাওয়া উচিত্ সেই প্রশংসা মূর্ত্তিদের আমি নিতে দেব না| 9 শুরুতেই আমি বলেছিলাম, কিছু একটা ঘটবে| এবং ঐসব জিনিস ঘটেছিল| এবং এখন অন্য কিছু ঘটার আগেই, তোমাদের আমি ভবিষ্যতে কি ঘটবে সে সম্বন্ধে জানাব|” 10 প্রভুর উদ্দেশ্যে গাও নতুন গান| তোমরা দূর দেশের লোকরা, তোমরা দূর দেশের নাবিকরা, তোমরা সমুদ্রের প্রাণীরা, তোমরা দূরবর্তী জায়গার লোকরা প্রভুর প্রশংসা কর! 11 মরুভূমি ও শহর, পূর্ব ইস্রায়েলের কেদরের গ্রামগুলি প্রভুর প্রশংসা কর| শেলাবাসীরা আনন্দগীত গাও! পর্বতশৃঙ্গ থেকে তোমরা গেযে ওঠ| 12 তারা প্রভুকে মহিমাম্বিত করুক| দূর দেশের লোকরা প্রভুর প্রশংসা করুক| 13 প্রভু বলবান সৈন্যের মত চলে যাবেন! তিনি হবেন যুদ্ধ করতে প্রস্তুত মানুষের মত| তিনি প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে উঠবেন| তিনি কাঁদবেন, উচ্চস্বরে চিত্কার করবেন এবং তার শএুদের পরাজিত করবেন| 14 “দীর্ঘদিন ধরে আমি কিছুই বলিনি| আমি নিজেকে সংযত করে রেখেছিলাম, বলিনি কোন কিছুই| কিন্তু এখন আমি প্রসব করতে যাচ্ছে এমন এক মহিলার মতো চিত্কার করে কাঁদব| আমি জোরে জোরে সশব্দে প্রশ্বাস নেব| 15 আমি পাহাড়-পর্বত ধ্বংস করব| আমি সেখানে জন্মানো সমস্ত গাছপালাকে শুকিয়ে দেব| আমি নদীকে পরিণত করব শুকনো জমিতে| আমি জলাশযকে শুকিয়ে দেব| 16 তারপর আমি অন্ধদের নেতৃত্ব দেব এক অজানা পথে যে সব স্থানে তারা কখনও যায়নি| অন্ধদের নিয়ে যাব সেই সব স্থানে| তাদের জন্য অন্ধকারকে আলোময় করে দেব| রুক্ষ জমিকে মসৃণ করে তুলব| আমি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা সবই করব এবং আমার লোকদের ছেড়ে যাব না! 17 কিন্তু কেউ কেউ আমাকে মেনে চলা বন্ধ করেছে| ঐসব লোকদের সোনায বাঁধানো মূর্ত্তি আছে| তারা ঐসব মূর্ত্তিদের বলে, ‘তোমরাই আমাদের দেবতা|’ যে লোকরা তাদের মূর্ত্তিগুলিতে আস্থা রাখে, তারা মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং লজ্জা পাবে| 18 “তোমরা, বধির লোকরা আমার কথা তোমাদের শোনা উচিত্| অন্ধ লোকরা, তোমাদের আমাকে দেখা এবং আমার দিকে তাকানো উচিত্|” 19 সারা পৃথিবীতে আমার সেবক (ইস্রায়েলের লোকজন) সব চেয়ে অন্ধ| যে বার্তাবাহককে আমি পৃথিবীতে পাঠিয়েছি সেই সবচেয়ে বধির| যে লোকটির সঙ্গে আমি বন্দোবস্ত করেছিলাম, প্রভুর দাস সে-ই সবচেয়ে বেশী অন্ধ| 20 আমার দাস অনেক মহান জিনিষ দেখেছে, কিন্তু সে সেসবের প্রতি মনোযোগ দেয় না| সে কানে শুনতে পায় কিন্তু সে মানতে চায় না|” 21 প্রভু চান তাঁর সেবকরা ভাল হোক| প্রভু চান তাঁর আশ্চর্য়্য়জনক শিক্ষামালাকে তারা শ্রদ্ধা করুক| 22 কিন্তু লোকগুলিকে দেখো| অন্য লোকরা তাদের পরাজিত করেছে| এবং তাদের জিনিস চুরি করে নিয়েছে| প্রতিটি যুবক ভীত| তারা জেলে বন্দী| লোকরা তাদের সব টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে| তাদের রক্ষা করার কেউ নেই| অন্যরা তাদের টাকা নিয়ে নিয়েছে| এই টাকা ফিরিয়ে দিয়ে যাও| একথা বলার মতোও কেউ নেই|” 23 তোমাদের কেউ কি ঈশ্বরের বাক্য শুনেছিলে? না! কিন্তু তোমাদের উচিত্ কাছ থেকে তাঁর কথা শোনা, এবং যা ঘটেছে সে সম্পর্কে মনোযোগ দেওয়া| 24 যাকোব ও ইস্রায়েল থেকে লোকদের ধনসম্পদ নিতে কে দিয়েছিল? প্রভুই তাদের এসব কাজ করার অনুমতি দিয়েছিলেন| আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছিলাম| তাই প্রভু আমাদের ধনসম্পদ নিয়ে নিতে লোকদের অনুমতি দিয়েছিলেন| ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর বিধির প্রতি মনোযোগ দেয় নি| প্রভু যে ভাবে চেয়ে ছিলেন সে ভাবে ইস্রায়েলের লোকরা জীবনযাপন করেনি| 25 তাই প্রভু তাদের ওপর রুদ্ধ হন| তিনি তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী যুদ্ধ ঘটিযেছিলেন| এমন হয়েছিল ঠিক যেন ইস্রায়েলের লোকরা আগুন দিয়ে ঘেরা ছিল| কিন্তু তারা কি ঘটছিল তা জানত না| ঘটনাটা ছিল তাদের পুড়ে যাওয়ার মতোই| কিন্তু যা ঘটছিল তারা তা বোঝার চেষ্টা করেনি|
1 আমি যাকোব, প্রভু, তোমার সৃষ্টিকর্তা! ইস্রায়েল, প্রভুই তোমার সৃষ্টিকর্তা| এখন প্রভু বলেন, “ভীত হযো না| আমি তোমাকে রক্ষা করেছি| আমি তোমার নাম ধরে ডেকেছি| তুমি আমারই| 2 তুমি যখনই সমস্যায় পড়বে আমি তোমার পাশে থাকব| নদী পার হতেও তোমার কষ্ট হবে না| আগুনের মধ্যে দিয়ে হাঁটার সময়ও তুমি দ3 হবে না; অগ্নিশিখা তোমাকে আঘাত করবে না| 3 কারণ আমি, প্রভু তোমার ঈশ্বর| আমি ইস্রায়েলের পবিত্রতম তোমার রক্ষাকর্তা| আমি তোমার জন্য মূল্য দিতে মিশরকে দিয়েছিলাম| আমি তোমাকে আমার করতে কূশ ও সবা দিয়েছিলাম| 4 তুমি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই আমি তোমাকে সম্মান করি| আমি তোমাকে ভালবাসি এবং আমি সব দেশসমূহ এবং জাতিগুলি তোমাকে দেব যাতে তুমি বাঁচতে পার|” 5 “সুতরাং ভীত হবে না! আমি তোমার সঙ্গে আছি| আমি একত্রিত করব তোমাদের শিশুদের এবং ফিরিয়েও দেব| আমি তাদের প্রাচ্য় ও পাশ্চাত্য থেকে এনে দেব| 6 উত্তরকে আমি বলব: আমার লোকদের আমাকে দিয়ে দাও| দক্ষিণকে বলব: আমার লোকদের বন্দী করে রেখো না| দূরবর্তী স্থান থেকে আমার পুত্রকন্যাদের আমার কাছে ফেরত্ দিয়ে দাও| 7 আমার সব লোকদের যাদের কাছে আমার নাম আছে, আমার কাছে ফিরিয়ে দাও| আমি ঐসব লোকদের নিজের জন্যই সৃষ্টি করেছিলাম| আমি তাদের সৃষ্টিকর্তা, তারা আমারই|” 8 ঈশ্বর বলেন, “চোখ থাকা সত্ত্বেও যারা অন্ধ তাদের বাইরে বের কর| কান থাকা সত্ত্বেও যারা বধির তাদের বাইরে বের কর| 9 প্রত্যেক মানুষের ও প্রত্যেক দেশের একত্রিত হওয়া উচিত্| হতে পারে, তাদের কারো মূর্ত্তি বলতে চেয়েছিল প্রথমে কি ঘটেছিল| তাদের উচিত্ তাদের সাক্ষীদের নিয়ে আসা| সাক্ষীদের উচিত্ সত্য কথা বলা| এটা দেখাবে যে তারা সঠিক|” 10 প্রভু বলেন, “তোমরা লোকরা আমার সাক্ষী| তোমরা হচ্ছো সেই দাস, যাদের আমি বেছে নিয়েছিলাম| আমি তোমাদের বেছে নিয়েছিলাম যাতে তোমরা আমাকে জানতে পার এবং আমাকে বিশ্বাস করতে পার| আমি তোমাদের বেছে ছিলাম যাতে তোমরা উপলদ্ধি করতে পার যে ‘আমি হলাম ঈশ্বর|’ আমি সত্যিকারের ঈশ্বর| আমার আগে কোন দেবতা ছিল না এবং আমার পরে কোন দেবতা থাকবে না|” 11 আমি নিজেই হলাম প্রভু| অন্য কোন পরিত্রাতা নেই, আমিই একমাত্র পরিত্রাতা| 12 আমিই একমাত্র ঈশ্বর যে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম| আমি তোমাদের রক্ষা করেছিলাম| এসব কথা আমি তোমাদের বলেছি| এমন নয় যে তোমাদের সঙ্গে কেউ ছিল যে এক জন অপরিচিত লোক| তোমরা আমার সাক্ষী এবং আমি ঈশ্বর|” প্রভু নিজেই এই সব কথা বলেছেন| 13 “আমি সব সময়ই ঈশ্বর| যখন আমি কিছু করি তখন আমার কাজের কেউই পরিবর্তন ঘটাতে পারবে না| এমন কি আমার ক্ষমতা থেকে কেউ কোন লোককে রক্ষা করতে পারবে না|” 14 প্রভু, ইস্রায়েলের পবিত্রতম, তোমাদের ত্রাণকর্ত্তা বলেন, “আমি বাবিলে তোমাদের জন্য সেনা পাঠাব| সমস্ত তালাবন্ধ ফটক আমি ভেঙ্গে ফেলব এবং কল্দীযদের গানগুলি বিলাপে পর্য়বসিত হবে| 15 আমিই তোমাদের প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর| আমি ইস্রায়েলের সৃষ্টিকর্তা| আমি তোমাদের রাজা|” 16 প্রভু সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে সড়ক বানাবেন| নিজের লোকদের জন্য এমনকি জলের মধ্যে দিয়ে তিনি রাস্তা গড়ে দেবেন| এবং প্রভু বলেন, 17 “যারা যুদ্ধযান, ঘোড়সওযার ও সেনাবলে বলীযান হয়ে আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তারা পরাজিত হবে| তারা আর কখনও উঠতে পারবে না| তাদের বিনাশ ঘটবে| মোমবাতির শিখা যেমন করে নিভিযে দেওয়া হয় সেই ভাবে তাদের থামানো হবে| 18 তাই শুরুতে যেসব ঘটনা ঘটেছিল তা আর মনে কোরো না| যা বহুকাল আগে ঘটে গেছে তা আর স্মরণ কোরো না| 19 কেন না এখন আমি নতুন কিছু করব| এখন তোমরা নতুন গাছের মতো বেড়ে উঠবে| তোমরা নিশ্চিত ভাবেই জান এটা সত্য| সত্যিই আমি মরুভূমিতে রাস্তা বানাব| শুষ্ক জমিতে সত্যিই আমি নদী তৈরী করব| 20 মরুভূমিতে জল জোগানোর পর বন্য জন্তুরা, যেমন শিয়াল এবং উটপাখী আমাকে সম্মান জানাবে| আমার বেছে নেওয়া লোকেদের জন্য, আমার নিজের লোকদের জন্য আমি জলের ব্যবস্থা করব| 21 এই লোকদের তো আমিই সৃষ্টিকর্তা এবং এরা আমার প্রশংসা করে গান গাইবে| 22 “যাকোব, তুমি আমার কাছে প্রার্থনা করনি| কেন? কারণ তোমরা ইস্রায়েলের লোকরা আমার বিষয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছ| 23 তোমরা তোমাদের মেষকে আমার জন্য উত্সর্গ করতে আন নি| তোমরা আমাকে সম্মান জানাও নি| তোমরা আমার জন্য বলি দাও নি| আমার উদ্দেশ্যে বলি দেবার জন্য আমি তোমাদের বাধ্য করিনি| আমি তোমাদের ধূপ জ্বালাতে বাধ্য করিনি| 24 তাই তোমরা আমাকে সম্মান জানাবার জন্য সামগ্রী এয করতে অর্থ ব্যয করনি| হোমবলির চর্বি দিয়ে তোমরা আমাকে সন্তুষ্ট করনি| কিন্তু তোমরা তোমাদের পাপসমূহ দিয়ে আমাকে ভারাএান্ত করেছিলে| তোমাদের কুকর্মসমূহ আমাকে খুব পরিশ্রান্ত করে তুলেছে| 25 “আমি, আমিই এক মাত্র যে তোমাদের সব পাপ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিই| নিজেকে খুশি করতে এইসব আমি করি! তোমাদের পাপের কথা আমি মনে রাখব না| 26 আমাকে মনে করিযে দিও (তোমাদের প্রশংসনীয গুনের কথা)| আমাদের এক সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত্ কোনটা ঠিক| তোমাদের কৃতকর্মের কথা আমাকে বলা উচিত্ এবং প্রমাণ কর যে তোমরা ঠিক| 27 তোমাদের প্রথম পিতা পাপী| তোমাদের আইনজীবিরা আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে| 28 আমি তোমাদের পবিত্র শাসকদের অপবিত্র করেছি| আমি যাকোবকে ধ্বংসের এবং ইস্রায়েলকে অভিশাপের শাস্তি দিয়েছি|”
1 “যাকোব তুমি আমার সেবক| আমার কথা শোন| ইস্রায়েল, আমি তোমাকে মনোনীত করেছি| আমি যা বলি তা তোমরা শোন| 2 আমি তোমাদের প্রভু| আমিই তোমাদের সৃষ্টি করেছি| তোমরা যা হয়ে উঠেছো আমি তাই করে গড়ে তুলেছি| তোমরা যখন মাতৃ গর্ভে ছিলে তখন থেকেই আমি তোমাদের সাহায্য করে আসছি| আমার দাস যাকোব ভয় পেও না| য়িশুরূণ তোমাকে আমি মনোনীত করেছি| 3 “তৃষ্ণার্ত লোকদের আমি জল দেব| শুষ্ক জমিতে আমি জল প্রবাহ বইয়ে দেব| তোমাদের শিশুদের মধ্যে আমি আমার আত্মা ঢেলে দেব, মনে হবে যেন তোমাদের সন্তানদের ওপর দিয়ে জল বয়ে যাচ্ছে| 4 ঘাসের মধ্যে তারা বেড়ে উঠবে| তারা জলস্রোতের ধারে গজিযে ওঠা বাইশী গাছদের মতো হবে| 5 “এক জন বলবে, ‘আমি প্রভুর|’ অন্য একজন ‘যাকোবের’ নাম ব্যবহার করবে| অন্য জন তার নাম সাক্ষর করবে এবং বলবে, ‘আমিই প্রভুর|’ অন্য জন ব্যবহার করবে ‘ইস্রায়েলের নাম|”‘ 6 প্রভু ইস্রায়েলের রাজা| প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলকে রক্ষা করবেন| প্রভু বলেন, “আমিই একমাত্র ঈশ্বর| অন্য কোন দেবতা নেই| আমিই আদি, আমিই অন্ত| 7 আমার মতো অন্য কোন ঈশ্বর নেই| যদি কেউ থাকেন তাহলে সেই দেবতার কথা বলা উচিত্| সেই দেবতার উচিত্ ছিল এখানে এসে প্রমাণ করা যে তিনিও আমারই মতো| আমি যখন এই প্রাচীন লোকদের সৃষ্টি করেছিলাম তখন কি ঘটেছিল সেই দেবতার আমাকে বলা উচিত্| ভবিষ্যতে কি ঘটবে তিনি যে তা জানেন তা প্রমাণ করার জন্য ঐ দেবতার আমাকে কোন নিদর্শন দেওয়া উচিত্| 8 ভীত হযো না| উদ্বিগ্ন হযো না! আমি সর্বদাই তোমাদের বলেছি যে কি ঘটবে| তোমরাই আমার সাক্ষী! অন্য কোন ঈশ্বর নেই| আমিই একমাত্র| অন্য কোন ‘শিলা’ নেই| আমি জানি আমিই একমাত্র!” 9 কেউ কেউ মূর্ত্তি বানায়| কিন্তু তারা মূল্যহীন| লোকে সেই মূর্ত্তিকে ভালোবাসে| কিন্তু সেইগুলি মূল্যহীন| সেই লোকগুলি মূর্ত্তিগুলির সাক্ষী হলেও তারা দেখতে পায় না| তারা কিছুই জানে না, তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য যথেষ্ট লজ্জিত হতে জানে না| 10 কে তৈরী করেছিল এই সব মূর্ত্তিগুলিকে? কে তৈরী করেছিল মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলি? 11 শ্রমিকরা ঐসব দেবতাদের বানিয়েছে| তারা সবাই মানুষ; দেবতা নয়| সেই সব লোকেরা যদি এক সঙ্গে বসে এই সব বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে তাহলে তারা খুবই লজ্জিত হবে এবং ভয় পাবে| 12 এক জন শ্রমিক তার যন্ত্র ব্যবহার করে গরম কযলা দিয়ে লোহা গরম করার কাজে| সেই লোকটি হাতুড়ি ব্যবহার করে ধাতু পেটানোর কাজে| এবং সেই ধাতুই মূর্ত্তি হয়ে উঠেছে| এই লোকটি তার বাহুর শক্তি ব্যবহার করে, কিন্তু খিদে পেলে সে তার ক্ষমতা হারায়| যদি মানুষটি জলপান না করে তবে সে দুর্বল হয়ে যায়| 13 আর এক জন শ্রমিক কাঠের ওপর সরল রেখায় দাগ টানবার জন্য ব্যবহার করেছে ওলন ও কম্পাস| এই দাগগুলি দেখে সে বুঝতে পারে কোথায় তাকে কাটতে হবে| তারপর কাঠ কাটার করাত দিয়ে কাঠ কেটে সে মূর্ত্তি তৈরী করে| তারপর কম্পাসের মত অন্য একটি বিশেষ যন্ত্র ক্য়ালিপার্শ দিয়ে সে মূর্ত্তির মাপ ঠিক করে| এই ভাবে শ্রমিকরা কাঠকে করে তোলে মানুষের মতো দেখতে| এই মানব মূর্ত্তি কিছু করতে পারে না| শুধু ঘরে বসে থাকে| 14 এক জন লোক এরস, তর্সা অথবা অলোন বৃক্ষ কেটে ফেলে| সেই লোকটি কোন গাছকেই বড় করতে পারে না| গাছগুলি নিজেদের ক্ষমতাতে বনাঞ্চলে বড় হয়| লোকে যদি কোন পাইন গাছ লাগায তবে তা বৃষ্টির জলে বড় হয়| 15 তারপর লোকে সেই গাছকে আগুন জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করে| লোকে গাছকে ছোট ছোট কাঠের টুকরোয পরিণত করে| নিজেকে গরম রাখতে ও রান্নার জন্য সে কাঠটি ব্যবহার করে| কিছু কাঠ দিয়ে সে আগুন জ্বালে এবং রুটি সেঁকে| তবুও সে ঐ একই কাঠের কিছু অংশ ব্যবহার করে একটি মূর্ত্তি বানাবার জন্য এবং সে সেই মূর্ত্তিটি পূজো করে| ঐ দেবতাটি মানুষের বানানো একটি মূর্ত্তি, কিন্তু মানুষ তার সামনে নত হয়| 16 অর্ধেক কাঠ লোকে আগুন জ্বালার কাজে ব্যবহার করে| লোকে মাংস রান্না করতে আগুন ব্যবহার করে| তারপর সেটা খায় পেট ভরা পর্য়ন্ত| লোকে নিজেকে গরম রাখতে কাঠ জ্বালায়| লোকে বলে, “ভালো| আমি এখন উষ্ণ| আগুন থেকে আলো আসায আমি দেখতেও পাচ্ছি|” 17 কিন্তু অল্প কিছু কাঠ অবশিষ্ট থাকে| তাই লোকে কাঠ দিয়ে মূর্ত্তি বানিয়ে তাকে দেবতা বলে| সে এই মূর্ত্তির সামনে মাথা নত করে এবং তার পূজা করে| লোকে ঐ মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা করতে করতে বলে: “তুমিই আমার দেবতা| আমাকে রক্ষা কর!” 18 সেই লোকরা জানে না তারা কি করছে| তারা বুঝতেও পারে না| এটা তাদের চোখ ঢেকে রাখার মতো অবস্থা যাতে তারা দেখতে না পায়| তাদের হৃদয় বোঝার চেষ্টা করে না| 19 সেই সব লোক এসব ভেবেও দেখে না| এই সব লোকরা বোঝে না তাই তারা নিজেদের নিয়েও ভাবে না| “আমি আগুনে অর্ধেক কাঠ পোড়ালাম| আমি গরম কযলা রুটি ও মাংস রান্না করতে ব্যবহার করলাম| সেই মাংস খেলামও| তারপর যে কাঠ বাঁচলো তাই দিয়ে ভয়ঙ্কর কিছু বানালাম| আমি কাঠের খণ্ডের পূজা করছি|” 20 সেই লোক জানে না সে কি করছে! সে বিভ্রান্ত, তাই তার মন তাকে ভুল পথে চালিত করছে| সে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না| নিজের ভুলও বুঝতে পারবে না| সে বলবে না, “আমি যে মূর্ত্তিকে ধরে রেখেছি সেটা ভ্রান্ত দেবতা|” 21 “যাকোব, এই সব স্মরণ করো! ইস্রায়েল স্মরণ করে দেখ তুমি আমার সেবক| তোমার সৃষ্টিকর্তা আমি; তুমি আমার দাস| তাই ইস্রায়েল, তুমি আমাকে ভুলে যেও না| 22 তোমার পাপ বিশাল মেঘের মত ছিল| আমি সেই পাপ ধুয়ে দিয়েছি| হাল্কা বাতাসে যেমন মেঘ অদৃশ্য হয়ে যায় তেমনি তোমার পাপও চলে গিয়েছে| তোমাকে আমি রক্ষা করেছি, উদ্ধার করেছি, তাই আমার কাছে ফিরে এসো!” 23 হে স্বর্গ, গান কর, কারণ প্রভু মহত্ কাজগুলি করেছেন| পৃথিবী, এমনকি পৃথিবীর নিম্নস্থলও আনন্দে চিত্কার কর! পর্বতশৃঙ্গরা! অরণ্যের সব গাছ গান গেযে উঠছে| কেন? কারণ প্রভু যাকোবকে রক্ষা করেছেন| প্রভু ইস্রায়েলে তাঁর মহিমা প্রদর্শন করেছেন| 24 তোমরা এখন যা, সে সৃষ্টি প্রভুর| তুমি মাতৃ-জঠরে থাকার সময়ই প্রভু এই সব করেছেন| প্রভু বলেন, “আমি প্রভু, সব কিছু বানিয়েছি! আকাশকে আমি নিজেই টেনে বিছিযেছি! বিশ্বকে আমি একাই ছড়িয়ে দিয়েছি| আমাকে সাহায্য করবার জন্য আমার সঙ্গে আর কেউ ছিল না|” 25 ভ্রান্ত ভাব্বাদীরা মিথ্যা কথা বলে| কিন্তু প্রভু তাদের দেখিয়ে দেন যে তাদের ভবিষ্যত্বাণী মিথ্যা| তিনি যাদুকরদের হত বুদ্ধি করে দেন| জ্ঞানী লোকদেরও তিনি বিভ্রান্ত করে দেন| যদিও তারা ভাবে তারা অনেক কিছু জানে কিন্তু প্রভু তাদের বোকার মতো করে দেবেন| 26 প্রভু লোকদের কাছে তাঁর বার্তা পৌঁছে দিতে তাঁর সেবকদের পাঠাবেন| প্রভু সেই বার্তাকে সত্য করবেন! লোকদের কি করা উচিত্ তা জানতে তিনি বার্তাবাহকদের পাঠাবেন| এবং প্রভু দেখান যে তাদের উপদেশটি ভালো|জেরুশালেমকে প্রভু বলেন, “লোকে আবার তোমার মধ্যে বাস করবে!” প্রভু যিহূদার শহরগুলিকে বললেন, “তোমরা আবার পুনর্গঠিত হবে!” ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরগুলিকে তিনি বললেন, “তোমাদের আমি আবার গড়ে তুলব|” 27 প্রভু গভীর জলাশযকে বলেন, “শুকনো হয়ে যাও! আমি তোমার জলপ্রবাহকেও শুকিয়ে দেব!” 28 প্রভু কোরসকে বলেন, “তুমি আমার মেষপালক, আমি যা চাইব তাই করবে তুমি| জেরুশালেমকে তুমি বলবে, ‘তোমাকে আবার গড়া হবে|’ জেরুশালেমের মন্দিরে তুমি বলবে, ‘তোমার ভিতকে আবার নির্মাণ করা হবে!”‘
1 তাঁর মনোনীত রাজা কোরসের বিষয়ে প্রভু এই কথা বলেন,“আমি কোরসের ডান হাত ধরবো| রাজাদের কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতে, আমি তাকে সাহায্য করব| কোরসকে নগরদ্বার আটকাবে না| আমি ফটকগুলো খুলে দেব এবং কোরস প্রবেশ করবে|” 2 “কোরস তোমার সেনারা যাত্রা করবে| আমি যাব তোমার সম্মুখে| আমি পর্বতকে সমতল করে দেব| ব্রোঞ্জের নগরদ্বার ভেঙ্গে দেব| দ্বারের লৌহ-দণ্ড কেটে দেব| 3 যে সম্পদ অন্ধকারে রক্ষিত ছিল তা আমি তোমাকে দেব| আমি তোমাকে সব গুপ্তধন দিয়ে দেব| আমি এসব করব যাতে তুমি বুঝতে পার, আমিই প্রভু| আমিই ইস্রায়েলের ঈশ্বর এবং আমি তোমাকে নাম ধরে ডাকছি| 4 আমি আমার দাস যাকোবের জন্য এই সব করি| আমি এই সব করি আমার নির্বাচিত লোক, ইস্রায়েলের লোকদের জন্য| কোরস নাম ধরে ডাকছি তোমাকে, তুমি জানো না আমাকে, তবু আমি তোমাকে নাম ধরে ডাকছি| 5 আমিই প্রভু| আমিই একমাত্র ঈশ্বর| আর কোন ঈশ্বর নেই| আমি তোমাকে কাপড় পরাব| কিন্তু এখনও তুমি আমাকে জানতে পারলে না! 6 আমি এই সব করি, যাতে লোকে জানবে যে আমিই একমাত্র ঈশ্বর| পূর্ব থেকে পশ্চিম, সব লোকরা জানবে যে আমিই প্রভু| আর কোন ঈশ্বর নেই| 7 আমি আলোর সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টিকর্তা অন্ধকারেরও| আমি শান্তি সৃষ্টি করি, আমি সংকটসমূহ তৈরী করি| আমিই প্রভু, আমি এই সব কিছু করি| 8 “আকাশের মেঘগুলো বৃষ্টির মত পৃথিবীর বুকে সুবিচার বর্ষন করুক| পৃথিবী উন্মুক্ত হোক এবং মুক্তি বেড়ে উঠুক| এবং তার সঙ্গে ধার্মিকতা বৃদ্ধি পাক| আমি প্রভু, তাকে তৈরী করেছি| 9 “এই লোকগুলিকে দেখো! তারা তাদের সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে তর্ক করছে| আমার সঙ্গে তাদের তর্ক লক্ষ্য কর| তারা ভাঙা মাটির পাত্রের এক একটি টুকরোর মত| এক জন লোক নরম ভিজে মাটি দিয়ে পাত্র তৈরী করে এবং কাদা মাটি জিজ্ঞাসা করে না, ‘মানুষ তুমি কি করছো?’ যে জিনিষটি তৈরী হচ্ছে, সেটির, যে লোকটি তৈরী করছে তাকে প্রশ্ন করবার এবং বলার ক্ষমতা থাকে না, “আমার কেন একটি হাতল নেই? 10 এক জন পিতা তার শিশুদের জীবন দেন| শিশুরা জিজ্ঞাসা করতে পারে না, ‘কেন তুমি আমাকে জীবন দিয়েছো|’ শিশুরা তার মাকে প্রশ্ন করতে পারে না, ‘কেন তুমি আমাকে জন্ম দিয়েছো?”‘ 11 প্রভু ঈশ্বর ইস্রায়েলের পবিত্রতম| তিনি ইস্রায়ে-লের সৃষ্টিকর্তা| তিনি বলেন,“তোমরা কি আমাকে আমার সন্তানদের কথা জিজ্ঞাসা করছ, অথবা আমি নিজে হাতে যা তৈরী করেছি তা নিয়ে কি করতে হবে তা তোমরা আমায় আদেশ দিচ্ছ? 12 তাই দেখো! আমি পৃথিবীকে বানিয়েছি| পৃথিবীর বাসিন্দা সব মানুষের সৃষ্টিকারী আমি| নিজের হাত দিয়ে আকাশ বানিয়েছি| এবং আমি আকাশের সমস্ত সৈন্যসমূহকেআদেশ করি| 13 আমি কোরসকে তার ক্ষমতা দিয়েছি| তাই সে ভাল কাজ করবে| আমি তার কাজ সহজ করে দেব| কোরস আবার আমার শহর গড়ে তুলবে এবং আমার লোকদের মুক্ত করবে| সে আমার লোকদের আমার কাছে বিক্রিী করবে না| এই সব কাজের জন্য আমাকে কাউকে কোন মূল্য দিতে হবে না| লোকরা মুক্ত হবে এবং আমাকে কাউকে উত্কোচ দিতে হবে না| প্রভু সর্বশক্তিমান এই সব কিছু বলেছেন|” 14 প্রভু বলেন, “মিশর ও কূশ দেশ ধনী দেশ| কিন্তু ইস্রায়েল তুমি এই সব সম্পদ পেয়ে যাবে| সবাযীযর লম্বা লোকগুলি হবে তোমার অধিকারভুক্ত| তারা গলায় শিকল ঝুলিয়ে তোমার পিছু পিছু হাঁটবে| তারা তোমার সামনে মাথা নত করে প্রার্থনা করবে|” ইস্রায়েল, ঈশ্বর তোমার সঙ্গে আছেন এবং আর কোন ঈশ্বর নেই| 15 ঈশ্বর তুমিই ঈশ্বর, তুমিই ইস্রায়েলের পরিত্রাতা! লোকে তোমাকে দেখতে পায় না| 16 বহু লোক মূর্ত্তিসমূহ তৈরী করে| কিন্তু তারা হতাশ হয়ে, লজ্জিত হয়ে চলে যাবে বহু দূরে| 17 কিন্তু ইস্রায়েলকে প্রভু রক্ষা করবেন| পরিত্রাণ চলবে চিরকাল, কখনই, আর কখনই ইস্রায়েল লজ্জিত হবে না| 18 প্রভুই ঈশ্বর| তিনিই আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন| প্রভু পৃথিবীকে তার জায়গায় ধরে রেখেছেন| পৃথিবীকে তৈরি করার সময় তিনি তা খালি রাখতে চাননি| পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার করেছেন তিনি! “আমিই প্রভু, অন্য কোন ঈশ্বর নেই| 19 আমি গোপনে কিছু বলি নি| আমি খোলাখুলি কথা বলেছি|আমি আমার কথাগুলি পৃথিবীর অন্ধকার স্থানে লুকিয়ে রাখি নি| আমি যাকোবের লোকদের পরিত্যক্ত জায়গায় আমার খোঁজ করতে বলিনি| আমিই প্রভু, আমি সত্যি কথা বলি, আমার মুখ নিঃসৃত সব সত্যি|” 20 “তোমরা অন্যান্য জাতি থেকে পালিয়ে এসেছ| তাই একত্রিত হয়ে আমার সামনে এস| এই মানুষগুলি ভ্রান্ত দেবতার মূর্ত্তি বহন করেছিল| এই সব লোকরা অসার দেবতাদের কাছে প্রার্থনা করে| কিন্তু তারা জানে না তারা কি করছে| 21 এদের আমার কাছে আসতে বল| তারা তাদের মামলা উপস্থিত করুক এবং উপদেশ নিক|“অনেক দিন আগে যে ঘটনা ঘটেছিল সে সম্পর্কে তোমাদের কে বলেছিল? অনেক অনেক দিন আগে থেকে কে তোমাদের এই সব জিনিসগুলির কথা বলে আসছে? আমি, এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বর সেই সব বলে ছিলাম| আমিই একমাত্র ঈশ্বর| এখানে কি আমার মতো অন্য কোন ঈশ্বর আছে? অন্য কোন উত্কৃষ্ট ঈশ্বর আছে কি? অন্য কোন ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বর আছে কি যে তার লোকদের রক্ষা করতে পারে? না! অন্য কোন ঈশ্বর নেই| 22 দূরবর্তী এলাকার লোকরা তোমরা মূর্ত্তির অনুসরণ বন্ধ কর| নিজেদের রক্ষা করতে তোমাদের উচিত্ আমাকে অনুসরণ করা| আমিই ঈশ্বর| অন্য কোন ঈশ্বর নেই| আমিই একমাত্র ঈশ্বর| 23 আমি আমার নিজ ক্ষমতাবলে এই শপথ করছি এবং যখন আমি প্রতিশ্রুতি করি তখন তা সত্যি হবেই| আমি যা প্রতিশ্রুতি করেছি তা ঘটবেই এবং আমার প্রতিশ্রুতি প্রত্যেক লোক আমার সামনে মাথা নত করবে| প্রত্যেক লোক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে যে তারা আমাকে অনুসরণ করবে| 24 লোকে বলবে, ‘এক মাত্র প্রভুর কাছ থেকেই ক্ষমতা ও ধার্মিকতা এসেছে|”‘ 25 সে বলবে, “শুধুমাত্র ঈশ্বরেই বিচার এবং শক্তি খুঁজে পাওয়া যায়|” কেউ কেউ প্রভুর ওপর রুদ্ধ| কিন্তু তারা তাঁর কাছে আসবে এবং তখন এই সব রুদ্ধ লোকরা লজ্জিত হবে| প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের ভাল কাজ করতে সাহায্য করবেন এবং তারা তাদের ঈশ্বরের জন্য খুব গর্বিত হবে|
1 বাবিলের বেল ও নবোর মূর্ত্তি আমার সামনে মাথা নত করবে| এইসব ভ্রান্ত দেবতারা শুধু মাত্র মূর্ত্তি| লোকরা এই মূর্ত্তিগুলি পশুর পিঠে চাপায়-এই মূর্ত্তিগুলি আসলে ভারী বোঝা, বইতে হয় কেবল| মূর্ত্তিরা কিছু করতে না পারলেও মানুষকে ক্লান্ত করে তোলে| 2 ঐসব মূর্ত্তিদের মাথা নত হবে| তাদের সকলেরই পতন হবে| তারা কেউ পালাতে পারবে না| বন্দীদের মত তাদের দূরে বয়ে নিয়ে যাওয়া হবে| 3 “যাকোবের পরিবার শোন! ইস্রায়েলের যে সব লোক এখনও বেঁচে আছো শোন! আমি তোমাদের বয়ে নিয়ে যাচ্ছি| তোমরা যখন মায়ের গর্ভে ছিলে তখন থেকেই আমি তোমাদের বইছি| 4 তোমরা যখন ভূমিষ্ট হলে তখন থেকে বইছি এবং বৃদ্ধ অবস্থাতেও আমি তোমাদের বইবো| তোমাদের চুল যখন ধূসর রঙের হয়ে যাবে তখনও আমি বইবো| এখনও বইছি আমি| কারণ আমি তোমাদের সৃষ্টিকর্তা| আমি তোমাদের বয়ে নিয়ে যাবো| রক্ষাও করব| 5 “কারও সঙ্গে কি আমার তুলনা করতে পার? না! কোন ব্যক্তি আমার সমান নয়! তুমি কি কোনও লোক খুঁজে পাবে যে হবে আমার সদৃশ? 6 কোন কোন লোক তাদের থলি থেকে সোনা বের করে| এবং তারা তাদের রূপো দাঁড়িপাল্লায় মাপে| সেই সব লোকরা মূর্ত্তি বানাতে শিল্পীকে পয়সা দেয়| তারপর তারা এই মূর্ত্তিগুলির সামনে মাথা নত করে এবং তাদের কাছে প্রার্থনা করে| 7 লোকরা মূর্ত্তিকে নিজের কাঁধে তুলে নেয এবং তাকে বহন করে| ঐ মূর্ত্তিটি অরয়োজনীয়- লোককেই বহন করতে হয়| যখন লোকে মূর্ত্তিটিকে মাটিতে প্রতিষ্ঠা করে, সে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে এবং সে নড়াচড়া করতে পারে না| যদি লোকরা মূর্ত্তির প্রতি চিত্কার করে, সেটি উত্তর দেবে না| এটা লোককে তাদের বিপদ থেকে মুক্ত করতে পারে না| 8 “তোমরা পাপ করেছো| তোমাদের এই সব নিয়ে ভাবা উচিত্| পুরানো দিনের কথা ভেবে শক্ত হও| 9 অনেক কাল আগে যা ঘটেছিল তা স্মরণ কর| স্মরণ কর আমিই সেই ঈশ্বর| অন্য কোন ঈশ্বর নেই| আমার মত কেউ নেই| 10 “শেষে কি হবে শুরুতেই আমি তোমাদের বলে দিয়েছি| অনেকদিন আগে, আমি যা বলেছি তা কিন্তু সব এখনও ঘটেনি| আমার যা পরিকল্পনা তা কিন্তু ঘটবেই| আমি যা করতে চাই তাই কিন্তু করি| 11 আমি পূর্বদিক থেকে এক জন লোককে ডাকছি| সেই লোকটি ঈগলের মতো হবে| সে দূরের কোন দেশ থেকে আসবে এবং আমি যা করার সিদ্ধান্ত নেব সেগুলিই করবে| আমি তোমাদের বলছি, আমি কিন্তু এসব করবোই| আমি তাকে বানিয়েছি এবং আমিই তাকে নিয়ে আসব! 12 “তোমাদের কেউ কেউ মনে করে তোমাদের প্রচণ্ড ক্ষমতা আছে| কিন্তু তোমরা ভাল কাজ কর না| আমার কথা শোন! 13 আমি ভাল কাজ করব| খুব শীঘ্রই আমি আমার লোকদের রক্ষা করব| আমি সিয়োন ও আমার আশ্চর্য়্য়জনক ইস্রায়েলের জন্য পরিত্রাণ আনব|”
1 “পড়ে যাও আবর্জনায এবং সেখানেই বসে পড়! কল্দীযদের (বাবিলের অপর নাম) কুমারী কন্যা| কন্যা বসে পড় মাটিতে| তুমি এখন আর শাসক নও! লোকরা তোমাকে কোমলা ক্ষীণকাযা যুবতী মহিলা বলে মনে করবে না| 2 এখন তোমাকে কঠিন পরিশ্রম করতে হবে| য়াঁতাকলে খাদ্যশস্য থেকে তোমাকে আটা বানাতে হবে| তোমার আবরণ সরিয়ে দাও, খুলে ফেল তোমার শৌখিন পোশাক| তোমাকে তোমার দেশ ছাড়তে হবে| তোমার পা দেখতে না পাওয়া পর্য়ন্ত তুমি তোমার ঘাঘরা তোল এবং নদী পার হয়ে যাও| 3 পুরুষেরা তোমার গোপন অঙ্গ দেখবে, তোমাকে ব্যবহার করবে য়ৌনকর্মে| বাজে কাজ করার জন্য মূল্য দিতে বাধ্য করবে তোমাকে, কেউ তোমাকে সাহায্য করতে আসবে না| 4 “আমার লোকরা বলে, ‘ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করেন| তাঁর নাম হল: প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের পবিত্রতম|”‘ 5 “তাই বাবিল, যেখানেই বসে থাকো, শান্ত হও| কল্দীযদের কন্যা, অন্ধকারে আশ্রয় নাও| কেন? কারণ তোমাকে আর ‘রাজ্যগুলির রাণী’ বলে ডাকা হবে না| 6 “আমি আমার লোকদের ওপর রুদ্ধ ছিলাম| ঐ লোকরা আমার সম্পত্তি| কিন্তু আমি তাদের ওপর রুদ্ধ ছিলাম, তাই আমি তাদের অসম্মান করেছি| আমি তাদের তোমার হাতে তুলে দিয়েছিলাম| তুমি তাদের শাস্তি দিয়েছ| কিন্তু তুমি তাদের ক্ষমা প্রদর্শন করোনি- বৃদ্ধকেও তুমি কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করেছ| 7 তুমি বললে, ‘আমি চির কাল থাকব| চির কাল আমিই থাকব মহারাণী|’ সেই সব লোকের ওপর তুমি যে অপকর্ম করেছ, তাও তুমি লক্ষ্য করনি| কি ঘটবে সে সম্পর্কেও ভাবনি| 8 তাই, এখন, ‘হে বিলাসলালিত রমণী’ আমার কথা শোন! তুমি নিজেকে নিরাপদ ভেবে নিজের সঙ্গে কথা বলে চলেছ| ‘আমিই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ মহিলা| আর কেউই আমার মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়| আমি কখনও বিধ্বা হব না| আমার সর্বদা ছেলে মেয়ে থাকবে|’ 9 এই দুটি ঘটনা তোমার জীবনে ঘটবে| প্রথমতঃ তুমি তোমার ছেলেমেয়েদের হারাবে| তুমি হারাবে তোমার স্বামীকেও| হ্যাঁ, এসবই তোমার জীবনে সত্যি সত্যিই ঘটবে| তোমার যাদুবিদ্য়া, তোমার কলাকৌশল তোমাকে রক্ষা করতে পারবে না| 10 তুমি বাজে কাজ করেও নিজেকে নিরাপদ মনে কর| তুমি নিজে নিজে মনে কর, ‘আমার অপকর্ম কেউ দেখতে পায় না|’ তুমি মনে কর তোমার বিচক্ষণতা ও জ্ঞান তোমাকে বাঁচাবে| তুমি মনে মনে ভাব, ‘আমিই অনন্যা| কেউ আমার মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়|’ 11 “কিন্তু বিপদ তোমার কাছে আসবে| তুমি জান না কখন এটা ঘটবে| কিন্তু বিপর্য়য আসছে| এই সঙ্কট বন্ধ করতে তুমি কিছুই করতে পারবে না| তুমি এত তাড়াতাড়ি ধ্বংস হবে যে তুমি বুঝতেও পারবে না কি ঘটল| 12 তুমি সারাজীবন কঠোর পরিশ্রম করে যাদুবিদ্য়া আর ছলাকলা শিখলে| তাই ছলাকলা আর যাদুবিদ্য়া শুরু কর| হয়তো এই কৌশল তোমাকে সাহায্য করবে| তুমি হয়তো কাউকে ভয়চকিত করতে পারবে| 13 তোমার অনেক উপদেষ্টা রয়েছে| তাদের অনেক উপদেশে তুমি কি ক্লান্ত? তোমার জ্যোতিষিরা যারা নক্ষত্র দেখে তারা আসুক এবং তোমাকে সাহায্য করুক| প্রতি মাসে তারা তোমাকে বলুক তোমার কি ঘটবে| 14 “কিন্তু সেই লোকরা নিজেদের বাঁচাতেই সক্ষম হবে না| খড়ের মতো তারা পুড়বে| তারা এত দ্রুত পুড়ে যাবে যে রুটি বানানোর জন্য কোন কযলা পড়ে থাকবে না| পোড়ানোর জন্য কোন আগুন পড়ে থাকবে না| 15 যে সব ব্যাপারের জন্য তুমি এত কঠিন পরিশ্রম করলে তার প্রতিটি বিষয়ে এটি ঘটবে| যে সব লোকদের সঙ্গে তুমি তোমার য়ৌবনকাল থেকে ব্যবসা করেছ, তারাও তোমাদের ত্যাগ করে যাবে| প্রত্যেকেই চলে যাবে তার নিজের পথ ধরে এবং তোমাকে রক্ষা করার জন্য কেউ থাকবে না|”
1 প্রভু বলেন, “যাকোবের পরিবার আমার কথা শোন! তোমরা নিজেদের ‘ইস্রায়েল’ বল| তোমরা এসেছো যিহূদার পরিবার থেকে| প্রতিশ্রুতি করার জন্য তোমরা প্রভুর নাম করো, তোমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা কর| কিন্তু এসব করার সময়ও তোমরা সত্ ও আন্তরিক নও|” 2 হ্যাঁ, তারা পবিত্র শহরের নাগরিক| তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে| সর্বশক্তিমান প্রভু হল তাঁর নাম| 3 “কি ঘটবে বহুদিন আগে আমি তা বলে দিয়েছি| এবং তারপর হঠাত্ই আমি তা ঘটিযেছি| 4 আমি সেটা করেছিলাম কারণ আমি জানি তোমরা একরোখা জেদী| আমি যা বলেছিলাম তার কোন কিছুকেই তোমরা বিশ্বাস করনি| তোমরা ছিলে বড় একরোখা লোহার মত যাকে বাঁকানো যায় না, একরোখা ছিলে ব্রোঞ্জের মতো| 5 তাই বহুদিন আগে আমি বলেছিলাম কি কি ঘটবে| কোন কিছু ঘটার অনেকদিন আগেই আমি তোমাদের সেই সব জিনিসগুলি ঘটার কথা বলেছিলাম| আমি এটা করেছিলাম যাতে তোমরা বলতে না পার, ‘আমরা যে সব দেবতাদের তৈরী করেছি তারা এসব করেছে|’ আমি এগুলি করেছি, যাতে তোমরা বলতে না পারো ‘আমাদের প্রতিমা, আমাদের মূর্ত্তি এই সব ঘটিযেছেন|”‘ 6 “কি ঘটেছে তোমরা দেখেছো| শুনেছোও| তাই এই খবরগুলি তোমাদের অন্যদেরও বলা উচিত্| এখন তোমাদের আমি নতুন জিনিসের কথা জানাব| যা তোমরা এখনও শোন নি| 7 এই সব ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি, এই সব ঘটনা এখনই ঘটে যাচ্ছে| আজকের আগে এসব কথা তোমরা শোন নি| তোমরা তাই বলতে পারবে না যে আমরা এই সব ইতিমধ্যেই জেনেছি| 8 “তবুও তোমরা আমার কথা শোননি! তোমরা কোন কিছুই শেখোনি! আমি যা বলেছি তোমরা তা শুনতে অস্বীকার করেছ| আমি জানি শুরু থেকেই তোমরা আমার বিরুদ্ধাচরণ করবে| জন্মাবার সময় থেকেই তোমরা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছ| 9 কিন্তু আমি ধৈর্য়্য়শীল থাকব| আমি এটা নিজের জন্যই করব| রুদ্ধ না হওয়া এবং তোমাদের ধ্বংস না করার জন্য লোকে আমার প্রশংসা করবে| 10 “দেখো, আমি তোমাদের বিশুদ্ধ করব| লোকে রূপোকে খাঁটি করে তুলতে আগুনের ব্যবহার করে| কিন্তু আমি যন্ত্রণা দিয়ে তোমাদের খাঁটি করে তুলব| 11 আমি নিজের জন্য এইসব করব, নিজের জন্য! কারণ আমি আমার নামের অসম্মান হতে দিতে পারি না| আমি অন্য আর কোন কিছুকেই আমার প্রশংসা ও মহিমা নিতে দেব না! 12 “যাকোব আমি তোমাকে আমার লোক বলে ডেকেছি| তাই আমার কথা শোন! আমিই আদি! আমিই অন্ত! 13 আমি নিজের হাতে পৃথিবীর সৃষ্টি করেছি, আমার ডান হাত সৃষ্টি করেছে আকাশ| ডাকলেই তারা এক সঙ্গে আমার সামনে চলে আসবে| 14 “তোমরা সবাই এসো এখানে, আমার কথা শোন! কোনো মূর্ত্তি কি বলেছে যে এগুলো ঘটবে? না!” প্রভু যাকে ভালোবাসেন, পছন্দ করেন বাবিল ও কল্দীযদের প্রতি যা চাইবে তাই করবেন| 15 প্রভু বলেন, “আমি বলেছি তাকে আমি ডাকব| আমি তাকে বয়ে আনব! আমি তাকে সফল করে তুলব! 16 এখানে এস এবং আমার কথা শোন! বাবিলের জাতি হিসেবে উত্থানের সময় আমি সেখানে ছিলাম| এবং প্রথম থেকেই আমি স্পষ্ট কথা বলেছি, যাতে লোকেরা বুঝতে পারে আমি কি বলেছি|”তখন যিশাইয় বললেন, “এখন প্রভু, আমার সদাপ্রভু আমাকে পাঠিয়েছেন| তাঁর আত্মা তোমাদের এই সব কথা বলবে| 17 প্রভু, পরিত্রাতা, ইস্রায়েলের পবিত্র একজন বলেন,“আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর| আমি তোমাদের সেই সব জিনিষ শেখাই যা সহায়ক| তোমাদের যে পথে যাওয়া উচিত্ সেই পথের আমি নেতৃত্ব দেব| 18 তোমরা যদি আমাকে মেনে চলতে তাহলে তোমাদের জীবনে ভরা নদীর মতো শান্তি আসবে| সমুদ্রের তরঙ্গের মতো ভাল জিনিস তোমাদের কাছে আসবে বার বার| 19 তোমরা যদি আমাকে মানতে, তোমাদের অনেক শিশু সন্তান থাকত| তারা অসংখ্য বালু কণার মতো| তোমরা যদি আমাকে মানতে, তোমরা ধ্বংস হতে পারতে না| তোমরা আমার সঙ্গে চালিযে যেতে পারতে|” 20 আমার লোকরা বাবিল ত্যাগ করো! আমার লোকরা কল্দীযদের কাছ থেকে পালাও| আনন্দের সঙ্গে লোকদের এই সংবাদ দাও| পৃথিবীর দূর দূর স্থানে এই বার্তা পৌঁছে দাও! লোককে বলো, “প্রভু তাঁর ভৃত্য যাকোবকে উদ্ধার করেছেন! 21 প্রভু তাঁর লোকদের মরুভূমির ওপর দিয়ে নিয়ে গেলেন কিন্তু তারা কখনও তৃষ্ণার্ত হয়নি| কেন? কারণ প্রভু তাঁর লোকদের জন্য পাথর থেকে জলপ্রবাহের সৃষ্টি করেছিলেন| তিনি পাথরটি ভাঙলেন এবং জল প্রবাহিত হতে লাগল!” 22 প্রভু আরও বলেছেন, “শযতান লোকদের জন্য কোথাও শান্তি থাকবে না!”
1 দূরবর্তী স্থানের সব লোকরা আমার কথা শোন| পৃথিবীবাসী সবাই আমার কথা শোন! আমি জন্মাবার আগেই প্রভু আমাকে তাঁর সেবা করতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন| আমি মাতৃজঠরে থাকার সময়েই প্রভু আমার নাম ধরে ডাক দেন| 2 প্রভু আমাকে তাঁর কথা বলতে ব্যবহার করেন! তিনি আমার মুখকে ধারালো তরবারির মতো তৈরী করেছেন| তিনি আমাকে নিজের হাতে লুকিয়ে রেখে আমাকে রক্ষাও করেছেন| প্রভু আমাকে একটি ধারালো তীরের মতো ব্যবহার করলেও, তিনি আমাকে তাঁর তীরের থলিতে লুকিয়ে রাখেন| 3 প্রভু আমাকে বললেন, “ইস্রায়েল তুমি আমার ভৃত্য! তোমার জন্য আমি যা করি তার জন্য আমি সম্মানিত হব|” 4 আমি বললাম, “আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি| আমি নিজেকে ক্ষয় করেছি, কিন্তু কোন প্রযো-জনীয কাজ করি নি| আমি আমার সমস্ত শক্তি ব্যয করেছি| কিন্তু আমি সত্যিকারের কিছুই করতে পারিনি| তাই প্রভুকেই ঠিক করতে হবে| তিনি আমাকে নিয়ে কি করবেন| ঈশ্বরই আমার পুরস্কারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন| 5 প্রভু আমাকে আমার মাতৃগর্ভে সৃষ্টি করেছেন, যাতে আমি তাঁর দাস হতে পারি এবং যাকোব ও ইস্রায়েলকে পথ প্রদর্শন করে তাঁর কাছে ফিরিয়ে আনতে পারি| প্রভু আমাকে সম্মান দেবেন| ঈশ্বরের কাছ থেকে আমি আমার শক্তি পাব|”প্রভু আমাকে বলেন, 6 “তুমি আমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ দাস| ইস্রায়েলের লোকরা এখন বন্দী| কিন্তু তাদের আমার কাছে আনা হবে| যাকোবের পরিবারগোষ্ঠী আমার কাছেই ফিরে আসবে| কিন্তু তোমার অন্য কাজ আছে, এর থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেই কাজ! আমি তোমাকে সমস্ত জাতির আলো হিসেবে তৈরি করব| বিশ্ববাসীকে রক্ষা করতে তুমিই হবে আমার পথ|” 7 প্রভু, ইস্রায়েলের পবিত্র একজন, ইস্রায়েলের পরিত্রাতা বলেন, “আমার দাস ঘৃণিত| সে শাসকদের সেবা করে| লোকে তাকে ঘৃণা করে| কিন্তু রাজারা তাকে দেখবে এবং তাকে সম্মান জানানোর জন্য উঠে দাঁড়াবে| মহান নেতারা তার সামনে মাথা নত করবে|” এই সব ঘটবে কারণ প্রভু, ইস্রায়েলের পবিত্রতম এই সব চান| এবং প্রভুকে বিশ্বাস করা যেতে পারে| তিনিই সে জন যিনি তোমাকে বেছে নিয়েছিলেন| 8 প্রভু বলেন, “একটা বিশেষ সময় আসবে, যখন আমি আমার দয়া দেখাব| তখন আমি তোমাদের প্রার্থনার জবাব দেব| বিশেষ দিন আসবে যখন আমি তোমাদের রক্ষা করব| আমি তোমাদের সাহায্য করব, আমি তোমাদের নিরাপত্তা দেব| লোকের সঙ্গে আমার যে চুক্তি আছে তার প্রমাণ হবে তোমরা| যে দেশ এখন ধ্বংসপ্রাপ্ত, সেই দেশকে তোমরা তার নিজের জমি ফিরিয়ে দেবে| 9 তোমরা কয়েদীদের বলবে: ‘কারাগার থেকে বেরিয়ে এসো|’ অন্ধকারে থাকা লোকদের তোমরা বলবে, ‘বেরিয়ে এসো অন্ধকার জগত থেকে!’ ভ্রমণ করতে করতে লোকে খাবে| নিস্ফলা পাহাড়েও তারা খাবার পাবে| 10 লোকে ক্ষুধার্ত হবে না, লোকরা তৃষ্ণার্ত হবে না| তাদের তপ্ত সূর্য় ও বাতাস কষ্ট দেবে না| কেন? কারণ ঈশ্বর তাদের আরাম দেবেন| ঈশ্বর তাদের নেতৃত্ব দেবেন| জলপ্রবাহগুলির কাছে তিনি তাদের নেতৃত্ব দেবেন| 11 “আমি আমার লোকদের জন্য সড়ক বানাব| পাহাড়গুলিকে করা হবে সমতল এবং নীচু রাস্তাগুলিকে করা হবে উঁচু| 12 “দেখ! দূর দূর স্থান থেকে আমার কাছে লোকে চলে আসছে| উত্তর ও পশ্চিম থেকে লোকরা আসছে| মিশরের সীনীম দেশ থেকে লোক আসছে|” 13 স্বর্গ ও পৃথিবী সুখী হও! পাহাড় চেঁচিয়ে ওঠ আনন্দে! কেন? কারণ প্রভু তাঁর লোকদের আরাম দেবেন| প্রভু গরীব লোকদের প্রতি সদয হবেন| 14 কিন্তু সিয়োন এখন বলে, “প্রভু আমাকে ত্যাগ করেছেন| আমার প্রভু আমাকে ভুলে গিয়েছেন|” 15 কিন্তু আমি বলি, “কোন মহিলা কি নিজের শিশুকে ভুলতে পারে? না! তার শরীর থেকে ভূমিষ্ট হওয়া শিশুকে ভুলতে পারে কোন নারী? না! কোন নারী তার শিশুকে ভুলতে পারে না| আমিও তোমাদের ভুলে যেতে পারি না| 16 এই দেখো, আমি নিজ হাতে তোমাদের নাম খোদাই করে রেখেছি! তোমাদের কথা সব সময়ই ভাবি| 17 তোমাদের শিশুরা ফিরে আসবে, লোকরা তোমাদের পরাজিত করবে কিন্তু তারা তোমাদের একাকী ফেলে যাবে|” 18 তাকাও! নিজেদের চারিদিকে তাকাও! তোমাদের সব ছেলেমেয়েরা একত্রিত হয়ে তোমাদের কাছে আসবে| প্রভু বলেন, “নিজের জীবনে তোমাদের কাছে এই প্রতিশ্রুতি করছি: তোমাদের ছেলেমেয়েরা হবে রত্নের মতো| যেটা তোমরা গলায় বেঁধে রাখবে| তোমাদের ছেলেমেয়েরা এক জন বধূর গলার মূল্যবান হারের মতো হবে| 19 এখন তোমরা পরাজিত ও তোমরা ধ্বংস হয়েছো| তোমাদের দেশ ধ্বংস হয়েছে| কিন্তু কিছু কাল পরে, তোমাদের দেশে তোমরা অনেক বেশী লোক পাবে এবং যে সমস্ত লোক তোমাদের ধ্বংস করেছিল তারা অনেক দূরে সরে যাবে| 20 তোমরা হারিযে যাওয়া শিশুর শোকে দুঃখিত ছিলে| সেই শিশুরাই কিন্তু তোমাদের বলবে, ‘এই জায়গা বড্ড ছোট! আমাদের বসবাসের জন্য বড় জায়গা দাও!’ 21 তারপর তোমরা নিজেরাই বলবে, “কে আমাদের এইসব শিশুদের দিয়েছে? এটা খুব ভালো! আমি বিচ্ছিন্ন ছিলাম, নির্জনে ছিলাম| পরাস্ত হয়ে নিজেদের লোক থেকে দূরে ছিলাম| তাই এই শিশুদের কে দিলেন? দেখো, আমি একা পড়েছিলাম| কোথা থেকে এই শিশুরা এসেছিল?”‘ 22 আমার প্রভু, সদাপ্রভু বলেন, “দেখ, আমার হাত জাতিদের ওপর ঢেউ তুলবে| আমি সব মানুষকে দেখাতে পতাকা তুলব| তখন তারা তোমাদের শিশুদের নিয়ে আসবে! তারা তোমাদের শিশুদের কাঁধে করে আনবে, বাহু দিয়ে শিশুদের ধরে রাখবে| 23 তাদের সম্রাটরা শিক্ষক হবেন| রাজকুমারীরা তাদের যত্ন করবে| সেই সব রাজা ও রাজকুমারীরা তোমাদের সামনে শ্রদ্ধায মাথা নত করবে | তারা তোমাদের পায়ের পাতার ধূলিতে চুম্বন করবে| তখন তোমরা বুঝবে যে আমিই প্রভু| তারপর তোমরা জানবে, আমার ওপর আস্থাশীল হওয়া কোন লোকই হতাশ হবে না|” 24 যখন কোন বলবান সেনা যুদ্ধ জয় করে প্রচুর সম্পদ নিয়ে আসে, তখন তোমরা তা ছিনিয়ে নিতে পারো না| যখন কোন শক্তিশালী সেনা কোন বন্দীকে পাহারা দেয়, তখন বন্দীটি পালিয়ে যেতে পারে না| 25 কিন্তু প্রভু বলেন, “বন্দী পালিয়ে যাবে| কেউ এক জন বন্দীদের শক্তিশালী সেনার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবে| কি করে ঘটবে এইসব? আমি তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করে দেবো| আমিই তোমাদের শিশুদের বাঁচাবো| 26 “তোমাদের যারা দাবিয়ে রেখেছিল আমি তাদের নিজেদের মাংস খেতে বাধ্য করব| দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হবার মত তারা তাদের নিজেদের রক্ত খেয়ে মাতাল হবে| তখন সবাই জেনে যাবে যে প্রভু তোমাদের পরিত্রাতা| প্রত্যেকটি লোক জেনে যাবে যে যাকোবের শক্তিশালী ‘একজন’ তোমাদের রক্ষা করেছিলেন|”
1 প্রভু বলেন, “ইস্রায়েলবাসীরা, তোমরা বল যে আমি তোমাদের মা, জেরুশালেমের সঙ্গে ব্বিাহ-বিচ্ছেদ করেছি| কিন্তু কোথায় সেই প্রমাণপত্র, যা র্সম্পং ছিন্ন হবার কথা প্রমাণ করে? আমার ছেলেরা, আমি কি কারো কাছে অর্থ ঋণ করেছিলাম? ঋণ শোধ করবার জন্য আমি কি তোমাদের বিক্রি করেছি? না! তোমরা নিজেদের খারাপ কাজের জন্য বিক্রি হয়েছিলে| তোমাদের খারাপ কাজের জন্য তোমাদের মা (জেরুশালেম) অনেক দূরে চলে গেছে| 2 আমি ঘরে এসে দেখি কেউ নেই| আমি বার বার ডাকলাম| কিন্তু কেউ উত্তর দিল না| তোমরা কি মনে কর, আমি তোমাদের রক্ষা করতে পারব না? আমার সব সমস্যা থেকেই উদ্ধার করার ক্ষমতা আছে| দেখ! আমি যদি নির্দেশ দিই সমুদ্র শুকিয়ে যাও, সমুদ্র তখনই শুকিয়ে যাবে| জল না পেয়ে মরে যাবে মাছ, মাছদের শরীর পচে যাবে| 3 আমি শোকের কালো কাপড়ের মতো আকাশকে অন্ধকার করে দিতে পারি| আকাশকে অন্ধকারময় করে দিতে পারি|” 4 আমার প্রভু আমাকে শিক্ষা দেবার ক্ষমতা দিয়েছেন| তাই আমি এখন এই দুঃখী লোকদের শিক্ষা দিই| প্রতিদিন সকালে তিনি শিক্ষকের মতো আমাকে দর্শন দিয়ে শিক্ষা দেন| 5 আমার প্রভু সদাপ্রভু আমাকে শিক্ষা গ্রহণে সাহায্য করেন| আমি তার বিরুদ্ধাচরণ করি না| তাঁকে অনাসরণ করা আমি বন্ধ করব না| 6 আমি লোকদের আমাকে আঘাত করতে দেব| আমি তাদের আমার দাড়ি থেকে চুল তুলে নিতে দেব| যখন তারা আমার নামে বাজে কথা বলবে, আমার গায়ে থুতু ফেলবে তখনও আমি নিজের মুখ লুকোব না| 7 প্রভু আমার সদাপ্রভু আমাকে সাহায্য করবেন| তাই তাদের বাজে কথা আমাকে আঘাত করবে না| আমি শক্তিশালী হব| আমি জানি আমি হতাশ হব না| 8 প্রভু আমার সঙ্গে আছেন| তিনিই দেখাবেন আমি নির্দোষ| তাই কেউ আমাকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারবে না| কেউ যদি আমাকে ভুল প্রমাণ করতে চায় তবে তাকে আমার সামনে এসে যুক্তি দেখাতে হবে| 9 তাকিযে দেখো, আমার প্রভু সদাপ্রভু আমাকে সাহায্য করছেন| তাই আমাকে কেউ পাপী সাব্যস্ত করতে পারবে না| তাদের পুরানো মূল্যহীন কাপড়ের মতো অবস্থা হবে| পোকামাকড় তাদের খাবে| 10 ঈশ্বরের প্রতি যারা শ্রদ্ধাশীল তারা প্রভুর দাসের কথা শুনবে| কি হবে তা না জেনেই প্রভুর দাস প্রভুর প্রতি অগাধ বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকে| সে সত্যি সত্যি প্রভুর নামের ওপর আস্থা রাখে এবং সে তার ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে| 11 “দেখ, তোমরা তোমাদের নিজেদের মত করে বাঁচতে চাও| তোমরা তোমাদের নিজেদের আগুনে আলো জ্বালাও| তাই নিজের পথেই থাকো| কিন্তু তোমরা শাস্তি পাবে| তোমরা তোমাদের আগুনের আলোতে পাড়ে যাবে| আমিই সেটা ঘাবো|”
1 “তোমাদের মধ্যে যারা ভালো জীবনযাপন করতে এবং ভালো কাজ করতে চেষ্টা কর, যারা প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য যাও, তারা আমার কথা শোন| যে পাথরটা কেটে তোমরা হয়েছিলে, সেই পাথর, তোমাদের পিতা অব্রাহামের কথা চিন্তা কর| 2 অব্রাহামই তোমাদের পিতা, তাঁর দিকে তাকানো উচিত্| তোমাদের জন্মদাত্রী মাতা সারার দিকে তাকাও| অব্রাহামকে যখন আমি ডেকেছিলাম তখন সে একা ছিল| তখন আমি তাকে আশীর্বাদ করেছিলাম এবং সে একটি মহান পরিবার শুরু করেছিল| ওর কাছ থেকে বহু লোক এসেছে|” 3 একই ভাবে, প্রভু সিয়োনের ওপরও কৃপা করবেন| সিয়োন ও তার লোকদের তিনি আরাম দেবেন| তিনি সিয়োনের জন্য মহান কাজ করবেন| প্রভু মরুভূমির পরিবর্তন করবেন| মরুভূমি এদনের বাগানের মতো সুন্দর হয়ে উঠবে| সিয়োনের জমি ছিল পরিত্যক্ত কিন্তু তা প্রভুর বাগানের মত হয়ে উঠবে| সেখানকার লোকরা সুখী, খুব সুখী হবে| তারা তাদের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে| তারা ধন্যবাদ ও জয়সূচক গান গাইবে| 4 “আমার লোকরা, আমার কথা শোন! আমার বিধি আমার কাছ থেকে যাবে| আমার বিচার হবে আলোর মত যেগুলো লোকদের দেখাবে কি ভাবে বাঁচতে হয়| 5 শীঘ্রই আমি আমার ন্যায় প্রকাশ করব| শীঘ্রই আমি তোমাদের রক্ষা করবো| আমি আমার ক্ষমতা ব্যবহার করব এবং সব জাতিগুলিকে বিচার করব| দূরবর্তী এলাকার লোকরা আমার প্রতীক্ষায আছে| আমার ক্ষমতা তাদের রক্ষা করবে, এই ভরসায তারা অপেক্ষায আছে| 6 স্বর্গের দিকে চোখ মেলো! চারিদিকে চোখ মেলে পৃথিবীকে দেখো! ধোঁযার মেঘের মত আকাশ অদৃশ্য হয়ে যাবে| পুরানো কাপড়ের মত পৃথিবী মূল্যহীন হয়ে যাবে| পৃথিবীতে প্রত্যেকে মারা যাবে, কিন্তু আমার পরিত্রাণ চির কালের জন্য থেকে যাবে| আমার ধার্মিকতা কখনও শেষ হবে না| 7 তোমরা যারা ধার্মিকতা বোঝ তাদের আমার কথা শুনতে হবে| লোকরা, যাদের হৃদয়ে আমার বিধি রাখা আছে, আমার কথা তাদের শুনতে হবে| যারা তোমাদের বিরোধীতা করে সেই খারাপ লোকদের তোমরা ভয় পেযো না| অভিশাপ পেয়ে ভয় পেযো না| 8 কেন? কারণ তাদের দশা হবে পুরানো কাপড়ের মতো| তাদের পোকামাকড় খেয়ে নেবে| তাদের পশমের মতো দশা হবে, কৃমি তাদের খেয়ে নেবে| কিন্তু আমার ধার্মিকতা চির কালের জন্য থেকে যাবে| চির কাল থাকবে পরিত্রাণ, চিরকাল করে যাব পরিত্রাণ|” 9 প্রভুর বাহু (শক্তি) জেগে ওঠো| জেগে ওঠো! শক্ত হও! বহুদিন আগেকার মত, প্রাচীন কালের মতো তোমার শক্তি ব্যবহার কর| তুমি হচ্ছো সেই শক্তি যে রহবকে পরাজিত করেছিল| তুমি সেই প্রকাণ্ড জলচরকে পরাস্ত করেছিলে| 10 সমুদ্র শুকিয়ে যাবার কারণ হয়েছিলে তুমি! তুমি গভীর জলাশযে জল শুকিয়ে দিয়েছিলে! সমুদ্রের অতলে পথ গড়ে উঠেছিল তোমার জন্যই! তোমার লোকরা নিরাপদে সমুদ্র পারাপার করেছিল| 11 প্রভু নিজের লোকদের রক্ষা করবেন, তারা আনন্দের সাথে সিয়োনে ফিরে যাবে| তারা খুব, খুব সুখী হবে| তাদের সুখ হবে চিরকালীন রাজমুকুটের মত| তারা আনন্দে গান গাইতে থাকবে| সব দুঃখ চলে যাবে অনেক দূরে| 12 প্রভু বলেন, “আমিই সে-ই যে তোমাদের আরাম দেয়| তবুও তোমরা কেন লোকের ভয়ে ভীত হয়ে ওঠ? তারা তো শুধু মাত্র মানুষ যাদের জন্ম মৃত্যু আছে| তারা তো কেবলই মানুষ- ঘাসের মতোই মরে তারা|” 13 প্রভু হলেন তোমাদের সৃষ্টিকর্তা| নিজের ক্ষমতায তিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন| নিজের ক্ষমতাতেই তিনি আকাশের সৃষ্টি করেছেন| কিন্তু তোমরা প্রভু ও তাঁর ক্ষমতার কথা ভুলে গিয়েছ| তাই তোমরা সেই রুদ্ধ লোকদের ভয় পাও| তাদের পরিকল্পনা হল তোমাদের বিনাশ করা, কিন্তু তারা এখন কোথায় রয়েছে? 14 কয়েদের ভিতরে যেসব লোক ছিল তারা মুক্ত হবে| তারা মরবে না, তবে কারাগারে পচবে| তাদের জন্য থাকবে যথেষ্ট খাবার| 15 “আমি প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর| আমি সমুদ্রে নাড়া দিই এবং ঢেউ তৈরী করি|” (প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর নাম|) 16 “আমার দাসগণ, যে কথা আমি তোমাদের বলতে চাই, সেই কথাগুলো আমি তোমাদের দেব| আমি তোমাদের আমার নিজের হাত দিয়ে আড়াল করবো এবং তোমাদের নিরাপত্তা দেব| আমি স্বর্গের পরিধি বাড়াতে এবং পৃথিবীর ভিত বানাতে তোমাদের ব্যবহার করব| ‘তোমরা আমারই লোক”‘ একথা সিয়োনকে বলবার জন্য আমি তোমাদের ব্যবহার করব| 17 জাগো! জাগো! জেরুশালেম উঠে দাঁড়াও! প্রভু তোমার ওপর প্রচণ্ড রুদ্ধ ছিলেন| তাই তোমরা শাস্তি পেয়েছিলে| এক পেয়ালা বিষ তোমাদের পান করতে হয়েছিল এবং তোমরা পান করেছিলে| তোমাদের সে রকমই শাস্তি ছিল| 18 জেরুশালেমের লোক জন অনেক| কিন্তু তারা কেউ তার নেতা হতে পারেনি| জেরুশালেম যে সন্তানদের পালন করেছে তাদের মধ্যে কেউই তাকে নেতৃত্ব দেবার জন্য নেতা হয়ে ওঠেনি| 19 জেরুশালেমের সমস্যা এসেছিল দুভাবে| খাদ্যের বণ্ট্ন এবং চুরি, দুর্ভিক্ষ এবং যুদ্ধ|কেউ তোমাদের কষ্টের দিনে সাহায্য করতে আসেনি| কেউ তোমাদের ক্ষমা দেখায়নি| 20 তোমাদের লোকরা দুর্বল হয়ে গিয়েছিল| তারা মাটিতে পড়ে গিয়ে সেখানেই শুয়ে পড়ে| তারা পথের আনাচে-কানাচে পড়েছিল| তাদের দশা হয়েছিল জালে পড়া হরিণের মতো| যতদিন পর্য়ন্ত তারা প্রভুর শাস্তি আর নিতে পারছিল না ততদিন তারা ছিল প্রভুর রুদ্ধ শাস্তির কবলে| তারা তাঁর কাছ থেকে আর তিরস্কার নিতে পারছিল না| 21 দরিদ্র জেরুশালেমবাসী, এই কথাটা শোন| তোমরা দ্রাক্ষারস পান না করলেও তোমরা মাতালদের মতো দুর্বল| 22 তোমাদের ঈশ্বর ও প্রভু, তাঁর লোকদের জন্য লড়াই করেন| তিনি তোমাদের বলেন, “দেখ, আমি তোমাদের দেশ থেকে ‘বিষের পানপাত্র’ বের করে নিয়ে যাচ্ছি| আমার রোধর পানপাত্র থেকে তোমাদের আর পান করতে হবে না| 23 এখন আমি আমার রোধ ব্যবহার করব যারা তোমাদের আঘাত করেছিল, তাদের ওপর| আঘাত করব তাদের ওপর যারা তোমাদের হত্যা করার চেষ্টা করেছিল| তারা তোমাদের বলেছিল, ‘আমাদের সামনে মাথা নত কর এবং আমরা তোমাদের মাথার ওপর দিয়ে হেঁটে যাব|’ তারা তোমাদের মাথা নত করতে বাধ্য করেছিল| তারপর তারা তোমাদের পিঠের ওপর দিয়ে ময়লার মতো হেঁটে গিয়েছিল| তোমরা তাদের পায়ে হাঁটা পথের মতো ছিলে|”
1 জেগে ওঠো! জেগে ওঠো! তোমাদের চমত্কার পোশাকগুলি পর! নিজেদের শক্তি পরিধান করো| পবিত্র জেরুশালেম উঠে দাঁড়াও! সেই সব অশুচি লোক এবং যাদের সুন্নত্ হয় নি, তারা আর তোমার কাছে আসবে না| 2 আবর্জনা ঝেড়ে ফেল! তোমরা সুন্দর পোশাক পর! সিয়োনের কন্যা জেরুশালেম তুমি বন্দী ছিলে| তোমার গলায় বাঁধা শিকল থেকে নিজেকে মুক্ত কর| 3 প্রভু বলেন, “তোমরা টাকার জন্য বিক্রি হওনি| তাই তোমাদের মুক্ত করতেও টাকার প্রয়োজন হবে না|” 4 প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার লোকরা প্রথমে মিশরে গিয়েছিল| তারা সেখানে গিয়ে এীতদাস হয়ে যায়| পরে অশূর তাদের এীতদাস করে রাখে| 5 প্রভু বলেন, এখন দেখো কি ঘটে! অন্য জাতি আমার লোকদের এীতদাস করে নিয়ে গিয়েছিল| আমার লোকদের নেবার জন্য এই জাতি কোন মূল্য দেয়নি| এই জাতি আমার লোকদের ওপর শাসন করে এবং তা নিয়ে বড়াই করে| তারা সব সময় আমাকে অপমান করে|” 6 প্রভু বলেন, “আমার লোকরা আমার নাম জানবে| সেই দিন তারা উপলদ্ধি করবে যে আমিই সে যে তাদের সঙ্গে কথা বলছি| সে হল আমি!” 7 এটা একটা খুবই চমত্কার ব্যাপার যে পাহাড় থেকে বার্তাবাহক সুসংবাদ নিয়ে এসেছে| বার্তাবাহকের ঘোষণাটিও চমত্কার, “সেখানে শান্তি বিরাজ করছে| রক্ষা পাচ্ছি আমরা| তোমাদের ঈশ্বর আমাদের রাজা!” 8 নগরের দ্বাররক্ষীরা চিত্কার করছে| তারা একত্রিত হয়ে পুনরায় আনন্দে মেতেছে! কেন? কারণ তারা সকলেই সিয়োনে প্রভুর প্রত্যাবর্তন দেখেছেন| 9 জেরুশালেম তোমার ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িতে আবার সুখ আসবে| তোমরা সবাই একসঙ্গে আনন্দিত হবে| কেন? কারণ প্রভু আবার জেরুশালেমের প্রতি উদার হবেন| প্রভু তাঁর লোকদের উদ্ধার করবেন| 10 প্রত্যেক জাতির ওপর প্রভু তাঁর পবিত্র ক্ষমতা দেখাবেন| প্রত্যেক জাতি দূরে থেকেও দেখতে পাবে ঈশ্বর তাঁর লোকদের রক্ষা করছেন| 11 তোমাদের বাবিল ত্যাগ করা উচিত্! উচিত্ ঐ স্থান ত্যাগ করা! যাজকরা তোমরা তোমাদের উপাসনার দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে এসো| নিজেদের বিশুদ্ধ করে তোল| অশুদ্ধ জিনিস স্পর্শ করবে না| 12 তোমরা বাবিল ত্যাগ করবে| তবে তাড়াহুড়ো করে বাবিল ত্যাগ করার জন্য ওরা তোমাদের বাধ্য করবে না| তোমাদের পালিয়ে যেতে কেউ বাধ্য করবে না| তোমরা হেঁটে হেঁটে চলে যাবে এবং প্রভুও তোমার সঙ্গে হাঁটবেন| প্রভু তোমাদের সামনে থাকবেন এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাদের পিছনে থাকবেন| 13 “আমার দাসকে দেখো| সে জ্ঞান অর্জন ও শিক্ষাদানে খুবই সফল হবে| সে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে| ভবিষ্যতে লোকে তাকে প্রচুর শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাবে| 14 “কিন্তু আমার দাসকে দেখে অনেকের খুব মনোকষ্ট হবে| সে এত বাজে ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল যে অনেকেরই তাকে মানুষ বলে চিনতে কষ্ট হবে| 15 এমনকি অনেক লোক বিহবল হয়ে যাবে এবং একটা কথাও বলতে পারবে না| রাজারা তাকে দেখে বিহবল হয়ে গিয়ে একটি কথাও বলতে পারবেন না| তারা আমার দাসের গল্প শোনেনি, কিন্তু কি ঘটেছিল তা দেখেছিল| সেই গল্প তারা শুনতে না পেলেও বুঝতে পারবে কি ঘটেছিল|”
1 কে সত্যিই বিশ্বাস করেছিল, আমাদের ঘোষণার কথা? কে সত্যি সত্যিই গ্রহণ করেছিল প্রভুর শাস্তি? 2 সে প্রভুর সামনে, ছোট গাছের মতে বড় হতে লাগল| সে ছিল শুকনো জমিতে গাছের শিকড়ের বড় হওয়ার মতো| তাকে দেখতে বিশেষ কিছু লাগত না| তার কোন বিশেষ মহিমা ছিল না| যদি আমরা তার দিকে তাকাতাম তবে তাকে ভালো লাগার মত বিশেষ কিছুই চোখে পড়ত না| 3 লোকে তাকে ঘৃণা করেছিল, তার বন্ধুরা তাকে ত্যাগ করেছিল| তার প্রচুর দুঃখ ছিল| অসুস্থতার বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা ছিল| লোকরা তার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকত| আমরা তাকে ঘৃণা করতাম| আমরা তার কথা চিন্তাও করিনি| 4 কিন্তু সে আমাদের অসুখগুলোকে বয়ে বেড়িযে-ছিল| সে আমাদের যন্ত্রণা ভোগ করেছিল| এবং আমরা মনে করেছিলাম ঈশ্বর তাকে শাস্তি দিচ্ছেন| তার কোন কৃতকর্মের জন্য ঈশ্বর তাকে শাস্তি দিচ্ছেন বলে আমরা মনে করেছিলাম| 5 কিন্তু আমাদেরই ভুল কাজের জন্য তাকে আহত হতে হয়েছিল| আমাদের পাপের জন্য সে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল| আমাদের কাঙ্খিত শাস্তি সে পেয়েছিল| তার আঘাতের জন্য আমাদের আঘাত সেরে উঠেছিল| 6 আমরা সবাই হারিযে যাওয়া মেষের মত ঘুরে বেড়িযেছিলাম| আমরা সবাই আমাদের নিজেদের পথে গিয়েছিলাম যখন প্রভু আমাদের সব শাস্তি তাকে দিয়ে ভোগ করাচ্ছিলেন| 7 তার সঙ্গে নিষ্ঠুর ব্যবহার করা হয়েছিল এবং সে আত্মসমর্পণ করেছিল| সে কখনও প্রতিবাদ করেনি| মেষকে যেমন হত্যার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে সে নালিশ করে না তেমনি সেও চুপচাপ ছিল| মেষ যেমন তার পশম কাটার সময় কোন শব্দ করে না, সেও তেমনি তার মুখ খোলে নি| 8 মানুষ শক্তি প্রযোগ করে তাকে নিয়েছিল এবং তার প্রতি ন্যায্য বিচার করেনি| তাঁর ভবিষ্যত্ পরিবার সম্পর্কে কেউ কিছু বলেনি| কারণ সে জীবিতদের দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল| আমার লোকদের পাপের জন্য সে শাস্তি পেয়েছিল| 9 তার মৃত্যু হয়েছিল এবং ধনীদের সঙ্গে তাকে সমাহিত করা হয়েছিল| তাকে দুষ্ট লোকদের সঙ্গে সমাহিত করা হয়েছিল যদিও সে কোন হিংস্র কাজ করেনি| সে কখনও কাউকে প্রতারণা করেনি| 10 প্রভু তাকে মেরে পিষে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন| যদি সে দোষমোচনের বলি হিসেবে নিজেকে উত্সর্গ করে, সে তার সন্তানের মুখ দেখবে এবং দীর্ঘ দিন বাঁচবে| ঈশ্বরের অভিপ্রায় তার হাতে সফল হবে| 11 তার আত্মা বহু কষ্ট পেলেও সে অনেক ভালো জিনিস ঘটা দেখতে পাবে| সে যেসব জিনিস শিখেছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট হবে| আমার ভালো দাসটি অনেক মানুষকে ধার্মিক করবে| সে তাদের অপরাধের দরুণ শাস্তি ভোগ করবে| 12 এই কারণে আমি তাকে অনেক লোকের মধ্যে পুরস্কৃত করব| যে সব লোকরা শক্তিশালী তাদের সঙ্গে সমস্ত জিনিসে তার অংশ থাকবে|আমি এটা তার জন্য করব কারণ সে লোকের জন্য নিজের জীবন উত্সর্গ করে মারা গিয়েছিল| তাকে এক জন অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হত| কিন্তু সত্যটা হল সে অনেক লোকের পাপ বহন করে ছিল| এবং এখন সে পাপী লোকদের সপক্ষে কথা বলছে|
1 মহিলারা সুখী হও! তোমাদের কোন সন্তান নেই কিন্তু তোমাদের সুখী হওয়া উচিত্| প্রভু বলেন, “যে মহিলা একা আছে সে ব্বিাহিত মহিলার চেয়েও বেশী সন্তান পাবে|” 2 তোমাদের তাঁবু বড় কর| দরজা বড় করে খুলে রাখো| নিজেদের ঘর বড় করবার কাজ বন্ধ রেখো না| তোমাদের তাঁবু শক্ত কর| 3 কেন? কারণ তোমাদের দ্রুত বৃদ্ধি হবে| তোমাদের শিশুরা অন্যান্য জাতিদের থেকেও মানুষ পাবে| তোমাদের শিশুরা ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরেও বসবাস করবে| 4 ভীত হযো না! তোমরা হতাশ হবে না| তোমার বিরুদ্ধে লোকে বাজে কথা বলবে না| তোমরা কখনও বিব্রত হবে না| যখন ছোট ছিলে তোমরা লজ্জা পেতে| কিন্তু এখন তোমরা সেই লজ্জা ভুলে যাবে| স্বামী হারিযে তোমরা যে লজ্জা পেয়েছিলে সেই লজ্জার কথা তোমরা আর স্মরণ করবে না| 5 কেন? কারণ তোমার স্বামী সেই একজন (ঈশ্বর) যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন| তাঁর নাম সর্বশক্তিমান প্রভু| তিনি ইস্রায়েলের পরিত্রাতা| তিনি ইস্রায়েলের পবিত্রতম| তাকেই গোটা পৃথিবীর ঈশ্বর বলে ডাকা হবে| 6 তোমরা ছিলে স্বামী পরিত্যক্তা মহিলার মত! তোমরা মনে প্রাণে খুব দুঃখী থাকলেও প্রভু তোমাদের তাঁর মানুষ হবার ডাক দেন| তোমরা ছিলে স্বামী পরিত্যক্তা যুবতী স্ত্রীদের মতো| কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের ডাক দিয়েছেন| 7 ঈশ্বর বলেন, “আমি তোমাদের অল্প সময়র জন্য ত্যাগ করেছিলাম| আমি তোমাদের নিজের আসনে আবার একত্রিত করব| আমি তোমাদের মহত্ উদারতা দেখাবো| 8 আমি রুদ্ধ হয়েছিলাম, তাই অল্প কালের জন্য আমি তোমাদের কাছ থেকে আমাকে লুকিয়ে রেখেছিলাম| তবে এখন সদয হয়ে চির কালের জন্য তোমাদের আরাম দেব|” তোমাদের পরিত্রাতা প্রভু এই সব বলেছেন| 9 ঈশ্বর বলেন, “নোহর সময়ের কথা স্মরণ কর| আমি পৃথিবীকে বন্যা দিয়ে শাস্তি দিই| কিন্তু আমি নোহকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম পুনরায় বন্যা দিয়ে পৃথিবীকে ধ্বংস করব না| ঠিক সে রকম তোমাদের কথা দিচ্ছি, তোমাদের ওপর আর রুদ্ধ হব না| তোমাদের আর কখনও বাজে কথা বলব না|” 10 প্রভু বলেন, “পর্বত অদৃশ্য হতে পারে| পাহাড় চূর্ণ হতে পারে| কিন্তু আমার দয়া তোমাদের থেকে দূরে যাবে না| তোমাদের শান্তি দেবো এবং এই শান্তি কখনও শেষ হবে না|” প্রভু তোমাদের ক্ষমা প্রদর্শন করে এই কথাগুলি বলেছিলেন| 11 “তুমি গরীব শহর! শএুরা ঝড়ের মত তোমার ওপর আছড়ে পড়েছিল| কোন ব্যক্তি তোমাদের আরাম দেয় নি| তোমাদের দেওয়ালে পাথর গাঁথবার জন্য আমি একটি সুন্দর মূল্যবান অলঙ্কার মিশ্রিত হামান ব্যবহার করব| এবং শিলান্যাসের সময় ব্যবহার করব নীলকান্তমণি পাথর| 12 প্রাচীরের মাথায় যে পাথর থাকবে তা বানানো হবে পান্না দিয়ে| ফটকে ব্যবহার করব উজ্জ্বল রত্ন| তোমার চারি দিকের প্রাচীরে ব্যবহার করব মূল্যবান রত্ন| 13 তোমার শিশুরা ঈশ্বরকে অনুসরণ করবে এবং তিনি তাদের শিক্ষা দেবেন| শিশুদের জন্য থাকবে প্রকৃত শান্তি| 14 তোমাদের ধার্মিকতা দিয়ে গড়া ও প্রতিষ্ঠা করা হবে| হিংসা ও বিদ্বেষ থেকে তুমি থাকবে নিরুপদ্রব| ভয়ের কিছু থাকবে না| কিছুই তোমাকে আঘাত করতে আসবে না| 15 আমার কোন সেনাদল তোমাকে আক্রমণ করবে না| যদিও বা করে তবে তুমি তাদের পরাস্ত করবে| 16 “দেখো, আমি কামারকে সৃষ্টি করেছি| সে আগুনে ফুঁ দিয়ে তাকে উত্তপ্ত করে| তারপর সে আগুন ব্যবহার করে গরম লোহার সাহায্যে নিজের ইচ্ছেমত যন্ত্র বানায়| ঠিক সে ভাবেই আমি সৃষ্টি করেছি ‘ধ্বংসকারকদের’ জিনিস ধ্বংস করার জন্য| 17 “মানুষ তোমাকে ধ্বংস করার জন্য অস্ত্র বানাবে| কিন্তু সেই অস্ত্রগুলি তোমাকে পরাস্ত করতে পারবে না| কেউ কেউ তোমার বিরুদ্ধে কথা বলবে| তবে যে যে লোক তোমার বিরুদ্ধে কথা বলছে তাদের ভুল বলে প্রমাণ করা হবে|”প্রভু বলেন, “প্রভুর দাসরা কি পায়? আমার কাছ থেকে আসা ভালো জিনিস তারা পায়!”
1 “আমার তৃষ্ণার্ত মানুষেরা এসে জল পান করো| নিজেদের অর্থ না থাকলেও বিষন্ন হযো না| যতক্ষণ না ক্ষুধা-তৃষ্ণা মেটে ততক্ষণ খাও এবং পান কর| খাদ্য ও দ্রাক্ষারসের জন্য কোন অর্থ লাগবে না| 2 সত্যি খাদ্য নয় এমন জিনিষের জন্য তোমরা কেন অর্থ নষ্ট করবে? তোমাদের সন্তষ্ট করে না এমন জিনিষের জন্য কেন কাজ করবে? আমার খুব কাছে এসে শোন, তোমরা খুব ভালো খাবার খাবে| তোমাদের আত্মা সন্তুষ্ট হবার মতো খাদ্য তোমরা ভোগ করবে| 3 “আমার কাছে এসে শোন আমি কি বলছি, তাহলে তোমাদের আত্মা বাঁচবে| আমি তোমাদের সঙ্গে চির কালের মত একটা চুক্তি করব| দাযূদের মত তোমাদের সঙ্গেও আমি চুক্তি করব| দাযূদের কাছে আমি প্রতিশ্রুতি করেছি চির কাল আমি ওকে ভালবাসব| চির কাল আমি তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকব| তোমরা এই চুক্তির ওপর আস্থাশীল থাকতে পারো| 4 দাযূদকে আমি অন্যান্য জাতির জন্য সাক্ষী বানিয়েছি| আমি তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি বহু জাতির শাসক ও সেনাপতি বানিয়ে দেব|” 5 তোমাদের অচেনা স্থানেও অনেক জাতি আছে| তোমরা সেই সব জাতিদের ডাকবে| তারা তোমাদের না চিনলেও তোমাদের কাছে ছুটে যাবে| এসব ঘটবে কারণ তোমাদের প্রভু এইসব চান| এসব ঘটবে কারণ ইস্রায়েলের পবিত্র এক জন তোমাদের সম্মান করেন| 6 তাই তোমাদের উচিত্ বেশী দেরি না করে প্রভুর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করা| তিনি এখন কাছে আছেন তোমাদের উচিত্ এখনই তাঁকে ডাকা| 7 দুষ্ট লোকদের দুষ্ট কাজ পরিত্যাগ করতে হবে| তাদের কু-চিন্তা ছেড়ে দিতে হবে| তাদের প্রভুর কাছে ফিরে আসতে হবে| ঈশ্বর তাদের ওপর করুণা করবেন| সেই লোকদের প্রভুর কাছে ফিরে আসা উচিত্; কারণ আমার ঈশ্বর ক্ষমা করেন| 8 প্রভু বলেন, “তোমাদের চিন্তা আর আমার চিন্তা এক নয়| তোমাদের রাস্তা আমার রাস্তার মত নয়| 9 পৃথিবীর থেকে স্বর্গ অনেক উঁচুতে| ঠিক সে রকমই তোমাদের থেকে আমার পথও অনেক উঁচু এবং চিন্তাও অনেক উঁচুতে বিচরণ করে|” প্রভু নিজে নিজেই একথা বলেন| 10 “বৃষ্টি ও বরফ কণা আকাশ থেকে পড়ে| এবং তা আর আকাশে ফিরে যায় না, যতক্ষণ না তারা মাটি স্পর্শ করে মাটিকে ভেজায| তখন মাটি গাছকে অঙ্কুরিত করে বড় করে তোলে| এই গাছগুলি কৃষকদের জন্য বীজ বানায়| আর লোকে এই বীজ ব্যবহার করে খাবার রুটি বানায়| 11 ঠিক সে ভাবেই আমার মুখ নিঃসৃত বাণী নিজেকে বাস্তবায়িত না করে ফিরে আসে না| আমি যা করতে চাই আমার কথা তাই করে| আমি যা করতে পাঠাই আমার কথা সফল ভাবে তাই করে ফিরে আসে| 12 তোমরা আনন্দের সঙ্গে চলে যাবে এবং শান্তিতে ফিরে আসবে| পাহাড়-পর্বত তোমাদের সামনে আনন্দে গান গেযে উঠতে শুরু করবে| মাঠের সব গাছ হাততালি দিয়ে উঠবে| 13 যেখানে যেখানে ঝোপঝাড় ছিল সেখানে সেখানে বেড়ে উঠবে বিশাল বিশাল দেবদারু গাছ| আগাছার স্থানে গজিযে উঠবে গুলমেঁদি গাছ| এই সব ঘটনা প্রভুকে বিখ্যাত করে তুলবে| এই সব ঘটনা প্রমাণ করবে যে প্রভু শক্তিশালী এবং এই প্রমাণ কখনই নষ্ট হবে না|”
1 প্রভু এইগুলি বলেছেন, “সব লোকের প্রতি ন্যায়পরায়ণ হও| সঠিক কাজ করো| কেন? কারণ আমার পরিত্রাণ শীঘ্র তোমাদের কাছে আসবে| গোটা বিশ্ব দেখবে আমার ধার্মিকতা|” 2 যে এই রকম করবে সে আনন্দিত হবে এবং এক জন লোক অবশ্যই এটাকে ধরে রাখবে| যে ঈশ্বরের বিশ্রামের দিনের বিধি মানবে সে আশীর্বাদপ্রাপ্ত হবে| যে কোন কুকর্ম করবে না সেও সুখী হবে|” 3 কিছু লোক যারা ইহুদী নয় তারা প্রভুর সঙ্গে যুক্ত হবে| ঐ লোকদের বলা উচিত্ নয়, “প্রভু আমাদের তাঁর লোক হিসেবে গ্রহণ করবেন না|” ঐ বিশেষ কতকগুলি এীতদাস যাদের নপুংসক করা হয়েছে তাদের বলা উচিত্ নয়, “আমি একটা শুকনো কাঠের টুকরো মাত্র, আমার কোন সন্তানের জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা নেই|” 4 এই নপুংসকদের একথা বলা উচিত্ নয়| কারণ প্রভু বলেন, “এই নপুংসকদের মধ্যে অনেকে আমার বিশ্রামের দিনের বিধি মেনে চলে| তারা আমার পছন্দের কাজ করে| তারা সত্যিই আমার চুক্তি মেনে চলে| তাই তাদের জন্য আমি মন্দিরে স্মারক স্থাপন করব| তাদের নাম আমার শহরে স্মরণ করা হবে| হ্যাঁ, আমি এই সব নপুংসকদের ছেলেমেয়েদের চেয়েও ভাল জিনিস দেব| আমি তাদের এমন একটি নাম দেব যা চির কাল থেকে যাবে| আমার লোকদের কাছ থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করা হবে না|” 5 6 ইহুদী নয় এমন কেউ কেউ প্রভুর সঙ্গে যোগ দেবে| তারা এই সব করবে প্রভুর সেবার জন্য এবং তারা প্রভুর নামকে ভালবাসে বলে তারা প্রভুর সঙ্গে যোগ দেবে তার দাস হওয়ার জন্য| তারা বিশ্রামকে বিশেষ উপাসনার দিন হিসাবে রাখবে এবং আমার চুক্তি বিধি মেনে চলবে| 7 প্রভু বলেন, “আমি তাদের আমার পবিত্র পর্বতে নিয়ে আসব| আমার প্রার্থনাগৃহে তাদের সুখী করে তুলব| তাদের নৈবেদ্য ও উত্সর্গে আমি খুশি হব| কেন? কারণ আমার মন্দিরকে বলা হবে সব জাতির প্রার্থনাগৃহ|” 8 প্রভু, আমার সদাপ্রভু এই সব বলেছেন|ইস্রায়েলের লোকদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হবে, কিন্তু প্রভু তাদের আবার একত্রিত করবেন| প্রভু বলেন, “আমি এই লোকদের আবার একত্রিত করব|” 9 অরণ্যের বন্য পশুরা এসে খাও! 10 এই রক্ষীরা (ভাব্বাদী) সবাই অন্ধ| তারা নিজেরাই জানে না যে তারা কি করছে| তারা সেই নীরব কুকুরের মতো, যারা ঘেউ ঘেউ করতে পারে না| তারা মাটিতে শুয়ে ঘুমিযে পড়ে| হায! তারা ঘুমোতে ভালবাসে| 11 তারা ক্ষুধার্ত কুকুরের মতো, তারা কখনই সন্তুষ্ট হয় না| মেষপালকরা জানে না তারা কি করছে| পথ ভোলা বিভ্রান্ত মেষদের মতোই তাদের অবস্থা| তারা লোভী| তারা নিজেরাই নিজেদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে| 12 তারা এসে বলল, “আমরা কিছুটা দ্রাক্ষারস পান করব| আমরা কিছুটা সুরা পান করব| একই জিনিস করবো আগামী কালও| এক মাত্র দ্রাক্ষারসই পান করে যাব আরো বেশী করে|”
1 সব ভালো লোকরা শেষ হয়ে গেছে কিন্তু কেউ লক্ষ্য করেনি| সমস্ত ভাল লোকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু কেউ জানে না কেন| এর কারণ হল মন্দ কাজ, যার জন্য ধার্মিক লোকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে| 2 কিন্তু শান্তি আসবে| এই লোকরা নিজেদের মৃত্যু শয়্য়ায বিশ্রাম খুঁজে নিতে পারবে| ঈশ্বর যে ভাবে চান তারা সেই ভাবেই জীবনযাপন করবে| 3 “তোমরা, ডাইনির বাচ্ছারা, এখানে এসো| এই যে ব্যাভিচারীর ও গণিকাদের বাচ্ছারা! তোমরা এখানে এসো! 4 তোমরা পাপী ও মিথ্য়েবাদী শিশু| তোমরা আমাকে নিয়ে মজা কর| তোমরা আমাকে মুখ ভেঙাও| আমাকে দেখে জিভ ভেঙাও| 5 প্রতিটি সবুজ গাছের নীচে তোমরা মূর্ত্তির পূজা করতে চাও| তোমরা শিশুদের হত্যা কর এবং তাদের উত্সর্গ কর পাথুরে জায়গায়| 6 তোমরা নদীর মসৃণ পাথরকে পূজা করতে ভালবাস| তোমরা তাদের পূজা করতে তাদের ওপর দ্রাক্ষারস ঢালো| তোমরা তাদের জন্য পশুবলি দাও| কিন্তু তোমরা যা পাবে তা হল শুধু এই পাথরগুলো| তোমরা কি মনে কর এতে আমি সুখী হই? না! এইসব আমাকে সুখী করে না! 7 তোমরা প্রতিটি পাহাড় পর্বতে শয়্য়া পেতেছ| যেগুলি হল মূর্ত্তির উপাসনা ক্ষেত্র| 8 তোমরা সেখানে গিয়ে শয়্য়া গ্রহণ করে ঐসব মূর্ত্তিগুলোর পূজা করে আমার বিরুদ্ধে পাপ কর| তোমরা ঐ মূর্ত্তিদের ভালোবাসো; ওদের উলঙ্গ দেহ দেখে মজা পাও| তোমরা আমার সঙ্গে থাকলেও এখন তোমরা আমাকে ত্যাগ করেছো ঐ মূর্ত্তিগুলোর কাছে থাকার জন্য| আমাকে স্মরণ করার জন্য যে সব জিনিস তোমাদের সাহায্য করত সেসব তোমরা লুকিয়ে রেখেছো| তোমরা ঐসব জিনিসগুলিকে দরজার পিছনে লুকিয়ে রেখেছ| তারপর তোমরা সেই মূর্ত্তিগুলোর সঙ্গে একটি চুক্তিবদ্ধ হয়েছো| 9 তোমাদের মূর্ত্তি মোলেকের জন্য তোমরা তোমাদের প্রসাধনী তেল এবং অন্যান্য জিনিষ ব্যবহার কর যাতে তোমাদের সুন্দর দেখায়| তোমরা তোমাদের বার্তাবাহকদের দূর দেশে পাঠিয়েছিলে| তোমরা এমনকি তাদের পাতালে পাঠিয়েছিলে, এটা তোমাদের মৃত্যুর স্থল| 10 “এই সব জিনিসগুলি করতে তুমি কঠোর পরিশ্রম করেছো| কিন্তু তোমরা কখনও ক্লান্ত হওনি, তোমরা নতুন শক্তি পেয়েছো| কারণ তোমরা ঐসব জিনিসগুলিকে উপভোগ করেছিলে| 11 তোমরা আমাকে স্মরণ করনি, তোমরা আমাকে লক্ষ্য করনি| তাহলে, কার জন্য তোমরা চিন্তায ছিলে? কার ভয়ে ভীত ছিলে? কেন মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলে? দেখ, আমি অনেকদিন ধরে শান্ত রয়েছি কিন্তু তুমি আমাকে শ্রদ্ধা করনি| 12 আমি তোমাদের বলতে পারতাম তোমাদের ‘ভালকাজ’ ও ‘ধর্মীয় কাজ’ এর বিষয়ে| বলতে পারতাম কিন্তু ঐসব অপ্রয়োজনীয়| 13 যখন তোমাদের সাহায্যের দরকার হত তখন তোমরা মূর্ত্তির সামনে, যাদের তোমরা তোমাদের চারপাশে জড়ো করেছ, কান্নাকাটি করতে| তাদের তোমাদের সাহায্য করতে দাও| কিন্তু আমি বলি, বাতাস তাদের অনেক দূরে নিয়ে চলে যাবে| আকস্মিক বাযুপ্রবাহে তারা সব চলে যাবে দূরে বহুদূরে| কিন্তু আমার প্রতি আস্থাশীল লোকরা আমার প্রতিশ্রুতি মতো দেশ পেয়ে যাবে| আমার পবিত্র পর্বত তাদের জন্য থাকবে| 14 রাস্তা পরিষ্কার করো! রাস্তা পরিষ্কার করো! আমার লোকদের রাস্তা থেকে বাধা সরাও| 15 ঈশ্বর ওপরে, আরো ওপরে| তিনি থাকবেন চিরকাল| তাঁর নাম পবিত্র| ঈশ্বর বলেন, আমি অনেক উঁচু ও পবিত্র স্থানে বাস করলেও যারা দুঃখীত ও বিনীত তাদের সঙ্গেও আমি থাকি| যাদের আত্মা অনিষ্টকারী তাদের আমি নতুন জীবন দেব| যাদের মনে দুঃখ রয়েছে আমি তাদের নতুন জীবন দেব| 16 আমি চিরকাল যুদ্ধ করব না| সব সময় আমি রুদ্ধ থাকব না| আমি যদি সব সময় রুদ্ধ থাকি তাহলে মানুষের আত্মা, যে জীবন আমি তাদের দিয়েছি সেটা আমার সামনে মরে যাবে| আমি তাদের তো নতুন জীবন দিয়েছি| 17 এই লোকরা খারাপ কাজ করেছিল বলে আমিই রুদ্ধ হয়েছিলাম| তাই আমি ইস্রায়েলকে শাস্তি দিয়েছিলাম এবং ইস্রায়েল আমাকে ত্যাগ করেছিল| সে তার ইচ্ছে মতো যেখানে খুশি চলে গিয়েছিল| 18 ইস্রায়েল কোথায় গিয়েছিল আমি দেখেছি| তাই আমি ইস্রায়েলকে ক্ষমা করব| আমি ইস্রায়েল এবং যারা তার জন্য বিলাপ করে তাদের নেতৃত্ব এবং আরাম দেব| 19 আমি তাদের নতুন শব্দ শেখাব ‘শান্তি|’ আমি আমার কাছের ও দূরের লোকেদের শান্তি দেব| আমি তাদের ক্ষমা করে দেবো!” প্রভু নিজে নিজেই এই কথা বলেন| 20 কিন্তু দুষ্ট লোকরা ঠিক একটি রুদ্ধ সমুদ্রের মতো| তারা শান্ত ও শান্তিপ্রিয হতে পারে না| তারাও সমুদ্রের মতো রুদ্ধ| এবং সমুদ্রের মতো তারাও কাদাকে আলোড়িত করে| 21 আমার ঈশ্বর বলেন, “দুষ্ট লোকদের শান্তি নেই|”
1 যত জোরে পারো চিত্কার করো! নিজেকে থামিয়ো না| শিঙার মতো চেঁচিয়ে ওঠো| মানুষকে তাদের ভুল কাজের কথা বলে দাও| যাকোবের পরিবারকে তাদের পাপের কথা জানিয়ে দাও! 2 তারা আমার খোঁজে প্রতিদিন আসে এবং আমার পথ শিখতে চায়, যেন তারা সঠিক পথের জাতি, যারা তাদের ঈশ্বরের বিধি অনুসরণ করা বন্ধ করেনি| তারা আমার কাছে তাদের ন্যায্য বিচার চায়| তারা ঈশ্বরকে কাছে পাবার ইচ্ছা করে| 3 এখন তারা বলে, “আপনাকে সম্মান জানাতে, আমরা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি| আপনি কেন আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন না? আমরা আপনাকে সম্মান জানাতে আমাদের শরীরকে আঘাত করছি| আপনি কেন আমাদের লক্ষ্য করছেন না?”কিন্তু প্রভু বলেন, “উপবাসের দিনগুলিতে তোমরা তোমাদের যা ইচ্ছে তাই করো| এবং তোমরা তোমাদের ভৃত্যদের কষ্ট দাও; নিজের শরীরকে নয়| 4 তোমরা ক্ষুধার্ত, কিন্তু খাদ্যের জন্য নয়| তোমাদের খিদে তর্ক আর যুদ্ধ করার জন্য, রুটির জন্য নয়| তোমরা তোমাদের শযতান হাত দিয়ে লোককে আঘাত করার জন্য ক্ষুধার্ত| তোমরা যখন খাওয়া বন্ধ করো সেটা আমার জন্য নয়| তোমরা আমার প্রশংসার জন্য তোমাদের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করো না| 5 তোমরা কি মনে কর ঐসব বিশেষ দিনে আমি চাই তোমরা উপবাস করে নিজেদের শরীরকে কষ্ট দাও? তোমরা কি মনে কর, আমি তোমাদের দুঃখী দেখতে চাই? তোমরা কি মনে কর আমি তোমাদের একটি ঘাসের মত মাথা নোযাতে চাই? তোমরা কি মনে কর আমি তোমাদের শোকবস্ত্র পরাতে চাই? তোমরা কি মনে কর যে আমি চাই লোকরা ছাইযের ওপরে বসে তাদের দুঃখ দেখাক? খাবার না খেয়ে তোমরা তোমাদের বিশেষ দিনে তাই করো| তোমরা কি ভাবো যে সত্যিই প্রভু এসব চান? 6 “আমি তোমাদের জানাবো কোন ধরণের বিশেষ দিন আমি চাই, এটা লোকদের মুক্ত করার দিন| আমি একটা দিন চাই যেদিন তোমরা লোকদের তাদের বোঝার ভার থেকে মুক্তি দেবে| আমি চাই একটা দিন, যে দিন তোমরা লোককে কষ্ট মুক্ত করবে| আমি চাই একটা দিন যেদিন তোমরা মানুষের বোঝা নামিয়ে দেবে| 7 আমি চাই তোমরা তোমাদের খাদ্য ভাগ করে নেবে ক্ষুধার্ত মানুষের সঙ্গে| আমি চাই তোমরা গৃহহীনদের খুঁজে নিজের ঘরে নিয়ে এসে রাখো| কোন মানুষকে বস্ত্রহীন দেখলে তাকে নিজের পোশাক দেবে| তারাও তোমাদের মত, তাদের দেখে নিজেকে লুকিয়ে রেখো না|” 8 তোমরা যদি এই সব করো তবে তোমাদের আলো ভোরের আলোর মতো কিরণ দিতে শুরু করবে| তখন তোমাদের সব ক্ষত নিরাময় হবে| তোমাদের “ধার্মিকতা” (ঈশ্বর) তোমাদের সামনে দিয়ে হাঁটবে, এবং প্রভুর মহিমাাতোমাদের পেছন পেছন চলবে| 9 তখন তোমরা প্রভুর সঙ্গে কথাবার্তা চালাতে পারবে| প্রভু তোমাদের প্রশ্োনর জবাব দেবেন! তোমরা প্রভুর জন্য চিত্কার করবে এবং তিনি বলবেন, “আমি এই খানে|”তোমাদের উচিত্ অন্যের সমস্যা ও বোঝা বানানো বন্ধ করা| তোমাদের অন্যকে আঘাত করে বা দোষারোপ করে কথা বলা বন্ধ করা উচিত্| 10 ক্ষুধার্ত মানুষদের জন্য দুঃখী হয়ে তাদের খাদ্য দেওয়া উচিত্| যারা সমস্যায় পড়েছে তাদের প্রয়োজন মতো তোমাদের সাহায্য করা উচিত্| তাহলে অন্ধকারের মধ্যে তোমরা আলোর দিশা পাবে এবং তোমাদের কোন দুঃখ থাকবে না| দুপুরের সূর্য়ালোকের মতো উজ্জল হবে তোমরা| 11 প্রভু তোমাদের সর্বদা নেতৃত্ব দেবেন| শুকনো জমিতেও তিনি তোমাদের আত্মাকে সন্তুষ্ট করবেন| প্রভু তোমাদের হাড়কে শক্তি দেবেন| তোমরা যথেষ্ট জল পাওয়া বাগানের মতো| তোমরা হবে সর্বদা জলে ভরা ঝর্ণার মতো| 12 বহু বছর ধরে ধ্বংস হলেও তোমরা তোমাদের শহরগুলি পুর্নগঠন করবে এবং বহু বছর ধরে থেকে যাবে| তোমাদের বলা হবে “যারা বেড়া মেরামত করে” এবং “যারা রাস্তাসমূহ ও বাড়ীগুলি তৈরী করে|” 13 ঈশ্বরের বিশ্রামের বিরুদ্ধে পাপ বন্ধ করলেই এই সব ঘটবে| তোমাদের বন্ধ করতে হবে বিশেষ দিনে নিজেদের খুশির জন্য কাজকর্ম| তোমাদের বিশ্রামের দিনকে সুখের দিন বলা উচিত্| প্রভুর বিশেষ দিনকে তোমাদের সম্মান জানানো উচিত্| অন্যান্য দিনে তোমরা যেসব কথা বলো ও যেসব কাজ করো সেই সব বিশেষ দিনে তোমাদের তা বন্ধ রাখা উচিত্| 14 তখন তোমরা প্রভুকে তোমাদের প্রতি সদয হতে বলতে পারবে এবং তিনি তোমাদের পৃথিবী থেকে অনেক উঁচুতে নিয়ে যাবেন| তোমাদের পিতা যাকোবকে তিনি যা যা দিয়েছিলেন তোমাদেরও তাই দেবেন|প্রভু নিজেই এই সব বলেছেন|
1 দেখো, তোমাদের রক্ষা করার জন্য প্রভুর ক্ষমতাই যথেষ্ট| তোমরা যখনই তাঁর সাহায্য চাইবে তখনই তিনি তা শুনতে পান| 2 কিন্তু তোমাদের পাপ ঈশ্বর থেকে তোমাদের বিচ্ছিন্ন করেছে| প্রভু তোমাদের পাপ দেখে তোমাদের কাছ থেকে দূরে চলে যান| 3 তোমাদের হাত নোংরা এবং রক্তে ভেজা| তোমাদের আঙ্গুলগুলি অপরাধ দিয়ে আচ্ছাদিত| তোমরা তোমাদের মুখ দিয়ে বেশি মিথ্যা কথা বলো| তোমাদের জিহবা কু-কথা বলে| 4 কেউ অন্যের নামে সত্যি কথা বলে না| একে অন্যের বিরুদ্ধে আদালতে লড়াই করে এবং নিজেদের মামলা জিততে ভূযো তর্কের ওপর নির্ভর করে| একে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে| তারা সব সমস্যায় ভরা এবং তারা শযতানির জন্ম দেয়| 5 তারা বিষাক্ত সাপের ডিমের মতো শযতানির জন্ম দেয়| তোমরা যদি ঐ ডিমগুলির একটিও খাও তবে মৃত্যু অনিবার্য় এবং যদি একটি ডিম ভাঙো তাহলে বিষাক্ত সাপ বেরিয়ে আসবে| মিথ্যাবাদীদের কথা মাকড়সার জালের মতো| 6 এই জাল কাপড় বানানোর কাজে ব্যবহার করা যায় না| তোমরা এই সব জাল দিয়ে নিজেদের আবৃত করতে পার না|কিছু লোক দুষ্ট কাজ করে এবং অন্য লোকদের আঘাত করার জন্য তাদের হাত ব্যবহার করে| 7 তারা তাদের পা শযতানির পিছনে দৌড়বার কাজে ব্যবহার করে| যারা কোন ভুল কাজ করেনি তাদের হত্যা করবার জন্য তারা তাড়াহুড়ো করে| তারা শুধুই দুষ্ট চিন্তা করে| হিংস্রতা, চুরি-জোচচুরি হল তাদের এক মাত্র বাঁচার পথ| 8 তারা জানে না শান্তির পথ| তাদের মধ্যে এক জনও সত্ নয়| তারা খুব অসাধু জীবনযাপন করে| এবং যারা এই সব লোকদের মতো জীবনযাপন করে তারা সারা জীবন কখনও শান্তি পায় না| 9 সব সততা ও ধার্মিকতা অদৃশ্য হয়ছে| আমাদের কাছাকাছি রয়েছে কেবলই অন্ধকার| তাই আমরা আলোর জন্য অপেক্ষা করি কিন্তু তার পরিবর্তে আমরা অন্ধকার পাই, আমরা আশা করি উজ্জ্বল আলো আসবে, কিন্তু আমরা অন্ধকারে পথ চলি| 10 আমরা চোখহীন মানুষের মতো| অন্ধ লোকেদের মত আমরা দেওয়ালে ধাক্কা খাই| আমরা রাতের মতো হোঁচট খেয়ে পড়ে যাই| এমনকি দিবালোকেও দেখতে পাই না| দিন দুপুরে মরা মানুষের মতো পড়ে যাই| 11 আমরা সবাই খুব দুঃখিত, ঘুঘু ও ভাল্লুকের মতো দুঃখের শব্দ করি| আমরা মানুষের ন্যায়বোধের জন্য অপেক্ষা করছি| কিন্তু এখনও পর্য়ন্ত কোন ন্যায়বোধের লক্ষণ নেই| আমরা রক্ষা পাবার জন্য অপেক্ষা করছি| কিন্তু পরিত্রাণ এখনও অনেক দূরে| 12 কেন? কারণ আমরা আমাদের ঈশ্বরের প্রতি অনেক অনেক খারাপ কাজ করেছি| আমাদের পাপ দেখিয়ে দিচ্ছে যে আমরা ভুল করেছি| আমরা জানি এসব করে আমরা দোষী হয়েছি| 13 আমরা পাপ করে প্রভুর কাছ থেকে সরে গিয়েছি| আমরা তাঁর থেকে দূরে চলে গিয়েছি, তাঁকে ত্যাগ করেছি| আমাদের পাপ প্রমাণ করে যে আমরা দোষী| আমরা জানি যে এই সব কাজ করে আমরা দোষ করেছি| আমরা পাপ করেছি এবং প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করেছি| আমরা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে তাঁকে ত্যাগ করেছি| আমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে খারাপ কাজের পরিকল্পনা করেছি| আমরা এই সব জিনিসগুলির কথা ভেবেছি এবং মনে মনে তার পরিকল্পনা করেছি| 14 আমরা বিচারবোধশূন্য হয়ে পড়েছি| ন্যায়বোধ চলে গেছে অনেক দূরে| সত্য রাস্তায় হোঁচট খেয়ে পড়েছে| ধার্মিকতাকে শহরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না| 15 সত্য অন্তর্হিত হয়েছে| যারা ভাল করতে চায় তাদের আক্রমণ করা হচ্ছে| প্রভু লক্ষ্য রাখলেও তিনি কোন ন্যায় দেখতে পাচ্ছেন না| প্রভু এই সব পছন্দ করেন না| 16 প্রভু দেখে অবাক হচ্ছেন যে মানব জাতির স্বপক্ষে বলবার জন্য কেউ দাঁড়াচ্ছে না| তাই প্রভু তাঁর নিজের ক্ষমতা ও ধার্মিকতা দ্বারা বিজয়ী হচ্ছেন| তিনি সমর্থন পাচ্ছেন, তাঁর নিজের মহত্ত্বের দ্বারা| 17 প্রভু যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন| তিনি পরেন ধার্মিকতার বর্ম, মুক্তির শিরস্ত্রাণ, শাস্তির পোশাক-সমূহ ও তাঁর দৃঢ় আগ্রহশীলতার আবরণ| 18 প্রভু নিজের শএুদের প্রতি রুদ্ধ| অতএব তিনি তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেবেন| প্রভু তাঁর শএুদের ওপর রুদ্ধ| তাই তিনি দূরবর্তী এলাকার লোকদের শাস্তি দেবেন| 19 পশ্চিমের লোকরা প্রভুকে ভয় পাবে এবং প্রভুর নামের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে| পূর্বের লোকরা তাকে ভয় পাবে এবং তারা প্রভুর মহিমাকে শ্রদ্ধা করবে| প্রভু ঈশ্বরের বাতাসের জোরে বহমান খরস্রোতা নদীর মতো দ্রুত আসবেন| 20 তখন সিয়োনে এক জন পরিত্রাতা আসবে| তিনি যাকোবের লোকদের কাছে আসবেন যারা পাপ কাজ করেও ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছে| 21 প্রভু বলেন, “ঐসব লোকদের সঙ্গে আমি একটা চুক্তি করব| আমি প্রতিশ্রুতি করছি যে, আমার আত্মা ও আমার বাক্য যেগুলি আমি তোমাদের মুখে দিচ্ছি সেগুলো তোমাদের ত্যাগ করবে না| সে সব তোমাদের সন্তান ও তাদের সন্তানদের মধ্যেও থেকে যাবে| সেইসব তোমাদের মধ্যে এখন থেকে চির কাল থেকে যাবে|”
1 “জেরুশালেম, আমার আলো উঠে পড়! তোমার আলো (ঈশ্বর) আসছেন| তোমার উপর প্রভুর মহিমা প্রতিভাত হবে| 2 অন্ধকার পৃথিবীকে ঢেকে দিয়েছে| লোকরা অন্ধকারাচ্ছন্ন| কিন্তু প্রভু তোমার উপর তাঁর কিরণ বিকীরণ করবেন| তাঁর মহিমা তোমার উপর দেখা যাবে| 3 সব জাতি তোমার আলোর কাছে আসবে| রাজারাও তোমার উজ্জ্বল আলোর (ঈশ্বর) কাছে আসবেন| 4 তোমার চার পাশে দেখো! দেখ, লোকরা তোমার চারপাশে জড়ো হচ্ছে এবং তোমার কাছে আসছে| তোমার পুত্রদের সঙ্গে দূর দূরান্ত থেকে কন্যারাও আসছে| 5 ভবিষ্যতে এসব ঘটবে এবং সেই সময় তুমি তোমার লোকদের দেখতে পাবে| তোমার মুখে সুখের বহিঃপ্রকাশ থাকবে| প্রথম তুমি ভীত হলেও পরে উচ্ছসিত হয়ে উঠবে| সাগর পারের সমস্ত ধনসম্পদ তোমার সামনে রাখা হবে| জাতিসমূহের ধনসম্পদও তোমার কাছে পৌঁছবে| 6 মিদিযন ও ঐফা থেকে উটের দল তোমার জমি পার হবে| শিবা থেকে দীর্ঘ উটের সারি আসবে তোমার কাছে| তারা বয়ে আনবে সোনা ও ধূপ| তারা প্রভুর প্রশংসা করে গান গাইবে| 7 লোকরা কেদরের সমস্ত মেষকে একত্রিত করে তোমাকে এনে দেবে| নবাযোত থেকে তারা মেষও আনবে| তুমি সেগুলি আমার বেদীতে নৈবেদ্য হিসাবে দেবে| এবং আমি তা গ্রহণ করব| আমি আমার মন্দির আরও সুন্দর করে বানিয়ে তুলবো| 8 লোকের দিকে তাকাও| আকাশে দ্রুত পার হয়ে যাওয়া মেঘের মতো তারা তোমার দিকে অগ্রসর হচ্ছে| তারা হল খুব দ্রুত বাসায উড়ে যাওয়া ঘুঘু পাখীদের মত| 9 দূরবর্তী এলাকায লোকরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে| বিশাল যাত্রীবাহী জাহাজগুলি জলযাত্রার জন্য প্রস্তুত| এই জাহাজগুলি তোমাদের ছেলেমেয়েদের দূরদেশ থেকে আনার প্রতিক্ষায রয়েছে| তারা তাদের ঈশ্বর ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সোনা এবং রূপো নিয়ে আসবে| প্রভু তোমাদের জন্য চমত্কার কাজ করবেন| 10 অন্য দেশের ছেলেমেয়েরা তোমাদের প্রাচীরগুলো আবার গড়ে তুলবে| তাদের রাজারা তোমাদের সেবা করবে| “আমি যখন তোমাদের উপর রুদ্ধ ছিলাম, তখন আমি তোমাদের শাস্তি দিয়েছিলাম| কিন্তু এখন তোমরা আমার স্বপক্ষে, এবং আমি তোমাদের জন্য করুণাময় হব| 11 তোমার ফটক সব সময় খোলা থাকবে| সেগুলি দিনরাত কখনই বন্ধ হবে না| সব জাতি ও রাজারা তোমাকে তাদের সম্পদ দেবে| 12 কোন জাতি বা দেশ যদি তোমার সেবা না করে তবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে| 13 লিবানোনের সব মহত্ দ্রব্যই তুমি পাবে| লোকরা তোমাকে পাইন, ফার ও সাইপ্রাসের মতো মূল্যবান গাছ দেবে| এই গাছগুলি জেরুশালেমে আমার জেরুশালেমস্থিত উপাসনাগৃহকে আরও সুন্দর করে তৈরি করতে ব্যবহৃত হবে| এই জায়গাটা আমার সিংহাসনের সামনে চৌকির মতো হবে| এবং আমি এই জায়গাটিকে যথেষ্ট সম্মান দেব| 14 অতীতে যারা তোমাকে কষ্ট দিয়েছে তারা এখন তোমার সামনে মাথা নত করবে| অতীতে যারা তোমাকে ঘৃণা করত তারা এখন তোমার পায়ে মাথা নত করবে| তারা তোমাকে ডাকবে, ‘প্রভুর নগরী!’ ‘ইস্রায়েলের পবিত্র এক জনের সিয়োন|”‘ 15 “তুমি আর কখনও পরিত্যক্ত হবে না| তুমি পুনরায় ঘৃণার পাত্র হবে না| তুমি কখনও শূন্য হবে না| আমি তোমাকে চির কালের জন্য মহান করে দেব| তুমি চির কালের জন্য এখন থেকেই সুখী হবে| 16 জাতিগুলি তোমার রয়োজনীয় সব কিছুই দেবে| তুমি হবে মাতৃদু3পাযী শিশুর মতো| কিন্তু তুমি রাজার ধন ‘পান’ করবে| তখন তুমি বুঝবে যে তিনি আমি, প্রভু, যিনি তোমাকে রক্ষা করেন| তুমি জানতে পারবে যাকোবের মহান ঈশ্বর তোমার পরিত্রাতা| 17 “এখন তোমার তামা রয়েছে| আমি তোমাকে সোনা এনে দেব| এখন তোমার লোহা রয়েছে| আমি তোমাকে দেব রূপা| আমি তোমার কাঠকে তামায পরিণত করব| আমি তোমার পাথরকে লোহাতে পরিণত করব| আমি তোমার শাস্তিকে শান্তিতে রূপান্তরিত করব| এখন তোমাকে লোকরা কষ্ট দিলেও পরে তারাই তোমার জন্য ভাল ভাল কাজ করবে| 18 “তোমার দেশে আর কখনও হিংসাত্মক ঘটনার খবর থাকবে না| লোকে আর তোমাকে বা তোমার দেশকে আক্রমণ করবে না| তুমি তোমার প্রাচীর সমূহের নাম দেবে ‘পরিত্রাণ’ এবং তোমার ফটকগুলির নাম দেবে ‘প্রশংসা|’ 19 “দিনের বেলায় সূর্য় আর কখনও তোমার আলো হবে না| রাত্রে আর কখনও চাঁদ তোমার আলো হবে না| কারণ প্রভুই তোমার চির কালের আলো| তোমার ঈশ্বরই তোমার জ্যোতি| 20 তোমার ‘সূর্য়’ কখনও অস্তমিত হবে না| তোমার ‘চাঁদ’ আর কখনও অন্ধকার হবে না| কারণ প্রভু চির কালের জন্য তোমার আলো হবেন এবং শোকের সময় শেষ হবে| 21 “তোমার সব লোক ভাল হবে| তারা পৃথিবীকে চির কালের জন্য পাবে| তাদের আমি সৃষ্টি করেছি| তারা আমার নিজের হাতে গড়ে তোলা চমত্কার বৃক্ষ| 22 সব চাইতে ছোট্ট পরিবার হবে বড় পরিবারগোষ্ঠী| ক্ষুদ্রতম পরিবার হবে শক্তিশালী জাতি| সঠিক সময়ে, আমি প্রভু দ্রুত চলে আসব| আমি এই সব ঘটনাগুলো ঘটাব|”
1 প্রভুর দাস বলেন, “প্রভু, আমার সদাপ্রভু, তাঁর আত্মা আমার মধ্যে দিয়েছেন|’ গরীবদের সঙ্গে কথা বলবার জন্য, তাদের ভগ্নহৃদয়ের ক্ষতে বন্ধনী জড়াবার জন্য এবং দুঃখীকে আরাম দেবার জন্য প্রভু আমাকে মনোনীত করেছেন| ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন নির্য়াতিতদের ও বন্দীদের জানাতে যে, তারা মুক্ত হচ্ছে| 2 ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর উদারতা কখন দেখা যাবে সে সময়ের কথা ঘোষণা করার জন্য| দুষ্ট লোকদের তাদের শাস্তির সময় ঘোষণা করবার জন্য প্রভু আমাকে পাঠিয়েছেন |ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন দুঃখীদের স্বস্তি দিতে| 3 ঈশ্বর আমাকে সিয়োনের বিমর্ষ লোকদের কাছে পাঠিয়েছেন| আমি তাদের তা ভোগ করার জন্য প্রস্তুত করে তুলব| আমি তাদের মাথার ছাই দূরে সরিয়ে দেব| আমি তাদের রাজমুকুট দেব| আমি তাদের দুঃখকে সরিয়ে দিয়ে সুখের তেল দেব| আমি তাদের দুঃখ দূর করব এবং উপাচারের বস্ত্র দেব| ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন এই সব লোকদের ‘ভাল বৃক্ষ’ এবং ‘প্রভুর বিস্মযকর চারা গাছ’ হিসেবে নাম দিতে| 4 “সেই সময় যে সব পুরানো শহরগুলি ধ্বংস হয়েছিল তা আবার নতুন করে গড়ে উঠবে| সেই শহরগুলি প্রারম্ভিক সৃষ্টির সময়ের মত আবার নতুন হয়ে উঠবে| শহরগুলি বহুকাল আগে ধ্বংস হয়েছিল| কিন্তু আবার তা নতুন করে গড়ে উঠবে| 5 “তখন তোমার শএুরা তোমার কাছে এসে মেষদের যত্ন নেবে| তোমার শএুদের শিশুরা তোমার মাঠে ও বাগানে কাজ করবে| 6 তোমাকে বলা হবে ‘প্রভুর যাজক|’ ‘আমাদের ঈশ্বরের দাস|’ পৃথিবীর সব জাতিদের ধনসম্পদ তুমি পাবে এবং এর জন্য তুমি গর্বিত হবে| 7 “অতীতে, লোকে তোমাকে লজ্জায ফেলত এবং তোমার কাছে খারাপ কথা বলত| তুমি অন্য লোকদের চেয়ে অনেক বেশী লজ্জিত হয়েছিলে| তাই তুমি অন্যদের তুলনায় তোমার ভূখণ্ডে দ্বিগুণ সুবিধা পাবে| তুমি চির কালের জন্য সুখ পাবে| 8 এসব কেন ঘটবে? কারণ আমি প্রভুর ধার্মিকতা ও ন্যায়বোধকে ভালবাসি| আমি চুরি করা এবং অন্যান্য মন্দ কাজকে ঘৃণা করি| তাই আমি লোকেদের তাদের প্রাপ্য পুরস্কার দেব| আমি চির কালের মতো আমার লোকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করব| 9 সব জাতির প্রতিটি লোক আমার লোকদের জানবে| যারাই তাদের দেখবে, জানতে পারবে যে প্রভুই তাদের আশীর্বাদ করেছেন|” 10 “প্রভু আমাকে খুব সুখী করেছেন| আমার সমগ্র সত্ত্বা আমার ঈশ্বরে সুখী| ঈশ্বর আমাকে পরিত্রাণের বস্ত্র পরিযেছেন| এটা হচ্ছে যেমন এক জন বিয়ের বর নিজেকে মালা দিয়ে সাজায সেই রকম| ঈশ্বর আমার ওপর ধার্মিকতার আবরণ বস্ত্র পরিযেছেন| যেন বিয়ের বধূ ব্বিাহের চমত্কার পোশাক পরেছে| 11 পৃথিবীই গাছদের জন্মানোর কারণ| লোকরা বাগানে বীজ লাগায এবং বাগান তাদের বড় করে তোলে| একই রকম ভাবে প্রভু ধার্মিকতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবেন| প্রভু সমস্ত জাতির সামনে প্রশংসাকে বৃদ্ধি করবেন|”
1 “সিয়োনকে আমি ভালবাসি, তাই আমি তার জন্য কথা বলে যাব| জেরুশালেমকে আমি ভালবাসি, তাই আমি কথা বন্ধ করব না| যতক্ষণ না ধার্মিকতা উজ্জ্বল আলোর মতো কিরণ দেয় ততক্ষণ আমি কথা বলে যাব| অগ্নিশিখার মত পরিত্রাণ জ্বলে না ওঠা পর্য়ন্ত আমি কথা বলব| 2 তখন সব জাতি তোমার ধার্মিকতা দেখতে পাবে| সমস্ত রাজারা তোমাকে সম্মান দেখাবে| তখন তোমার নতুন নাম হবে| প্রভু নিজেই সেই নাম দেবেন| 3 প্রভু তোমার জন্য গর্বিত হবেন| তুমি হবে প্রভুর হাতের সুন্দর মুকুটের মত| 4 তোমাকে আর কেউ ত্যাজ্য লোক বলবে না| তোমার ভূমিকে কেউ ‘ধ্বংসস্থান’ বলবে না| তারা তোমাকে বলবে, ‘ভালোবাসার লোক|’ তোমার দেশকে বলা হবে, ‘কনে|’ কেন? কারণ ঈশ্বর তোমাদের ভালবাসেন| তোমাদের দেশ ব্বিাহিত হবে| 5 যখন কোন যুবক কোন যুবতীকে ভালবাসে তখন সে তাকে বিয়ে করে এবং যুবতীটি বিয়ের পর তার স্ত্রী হয়| একই পথে তোমার জমি হবে তোমার শিশুদের| এক জন লোক তার নতুন স্ত্রীকে পেয়ে খুব খুশী হয়| একই রকম ভাবে, ঈশ্বরও তোমাদের নিয়ে খুব সুখী হবেন|” 6 “জেরুশালেম, তোমার প্রাচীরে আমি রক্ষী মোতাযেন করব| সেই রক্ষীরা নীরব থাকবে না| তারা দিন রাত প্রার্থনা করবে|” রক্ষীরা, তোমরা প্রভুর প্রতি প্রার্থনা অব্যাহত রেখো| তোমরা অবশ্যই তাকে তাঁর প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিযে দেবে| কখনই প্রার্থনা থামাবে না| 7 যতক্ষণ না প্রভু জেরুশালেমকে লোকের প্রশংসার শহর করে তুলছেন ততক্ষণ তুমি প্রার্থনা চালাবে| প্রভু একটি প্রতিশ্রুতি করেছেন| প্রভু প্রমাণ হিসেবে তাঁর নিজের ক্ষমতা প্রযোগ করবেন| এবং প্রতিশ্রুতি পালনে নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করবেন| 8 প্রভু বলেছেন, “আমি আর কখনও তোমার খাদ্য শএুদের দেবো না| আমি প্রতিশ্রুতি করছি তোমার তৈরি দ্রাক্ষারস শএুরা আর নেবে না| 9 যে সব লোকরা শস্য সংগ্রহ করবে তারাই তা খাবে এবং এই সব লোকরা প্রভুর প্রশংসা করবে| যে সব লোকরা দ্রাক্ষা সংগ্রহ করবে তারাই দ্রাক্ষা থেকে উত্পন্ন দ্রাক্ষারস পান করতে পারবে| এই সবই আমার পবিত্রস্থানে ঘটবে|” 10 ফটক দিয়ে এসো! পথটাকে লোকদের জন্য পরিষ্কার করো| রাস্তা প্রস্তুত করো| রাস্তার পাথর সরিয়ে দাও| মনুষ্যজাতির জন্য প্রতীক হিসাবে ধ্বজাটি ওড়াও| 11 শোন, প্রভু দূরবর্তী দেশগুলির লোকদের বলেছেন, “সিয়োনের লোকদের বল: দেখ, তোমাদের পরিত্রাতা আসছেন| তিনি তোমাদের পুরস্কার আনছেন| তিনি সেই পুরস্কার সঙ্গে করে আনছেন|” 12 তাঁর লোকদের বলা হবে “পবিত্র লোক|” “প্রভুর রক্ষা করা মানুষ|” জেরুশালেমকে বলা হবে, “আকাঙ্খিত শহর|” “সেই শহর যা পরিত্যাগ করা হয়নি|”
1 ইদোম থেকে কে আসছে? তিনি আসছেন বস্রা শহর থেকে| এবং তাঁর বস্ত্র উজ্জ্বল লাল রঙে রঞ্জিত| তাঁকে তাঁর বস্ত্রে মহিমান্বিত দেখাচ্ছে| তিনি তাঁর মহান ক্ষমতাবলে মাথা উঁচু করে হাঁটছেন| তিনি বলেন, “তোমাদের রক্ষা করার ক্ষমতা আমার আছে এবং আমি সত্য কথা বলব|” 2 “কেন আপনার বস্ত্র লাল? দ্রাক্ষাফল থেকে যারা দ্রাক্ষারস বানায় তাদের মত লাল!” 3 তাঁর জবাব, “আমি দ্রাক্ষারস বানাবার জায়গায়, যেখানে দ্রাক্ষাফল পা দিয়ে চটকিযে রস বের করা হয়, সেখানে হেঁটেছি| আমাকে কেউ সাহায্য করেনি| আমি রুদ্ধ ছিলাম এবং দ্রাক্ষার ওপর দিয়ে হেঁটে যাই| সেই রসআমার কাপড়ের ওপর ছলকে পড়েছিল| তাই এখন আমার বস্ত্র নোংরা| 4 আমি লোককে শাস্তি দিতে একটা সময় বেছে নিয়েছি| এখন আমার লোকদের রক্ষা করার সময় এসেছে| 5 আমি চারি দিকে তাকালাম| কিন্তু আমাকে সাহায্য করার মত কাউকে দেখলাম না| আমি এটা দেখে আশ্চর্য়্য় হয়ে গেলাম যে কেউ আমাকে সমর্থন করল না| তাই আমি আমার লোকদের রক্ষা করতে আমার নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করেছিলাম| আমার নিজের রোধ আমাকে সমর্থন করেছিল| 6 যখন আমি রুদ্ধ ছিলাম, তখন মানুষের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছি| আমি যখন রাগে উন্মত্ত ছিলাম আমি তাদের শাস্তি দিয়েছি এবং তাদের রক্ত মাটিতে ফেলেছি|” 7 আমি স্মরণ করব যে প্রভু উদার| আমি তাঁকে প্রশংসা করবার কথা স্মরণ করব| ইস্রায়েলের পরিবারকে প্রভু অনেক ভাল জিনিস দিয়েছেন| প্রভু আমাদের ওপর খুব সদয| প্রভু আমাদের ক্ষমা প্রদর্শন করেছেন| 8 প্রভু বলেন, “এরা সবাই আমার লোক| এরা সত্যই আমার শিশু|” তাই প্রভু এদের রক্ষা করেছেন| 9 তাদের সমস্ত বিপদে, তিনিও তাদের সাথে উদ্বিগ্ন ছিলেন| প্রভু এই সব লোকদের ভালবাসতেন এবং তাদের জন্য দুঃখ বোধ করতেন| তাই প্রভু তাদের রক্ষা করেন| তাই তিনি তাদের রক্ষা করতে তাঁর বিশেষ দূত পাঠিয়েছিলেন| তিনি তাদের উঠিযে বয়ে নিয়ে যান এবং চির কালের জন্য তাঁদের যত্ন নেন| 10 কিন্তু মানুষ তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে| তারা তাঁর পবিত্র আত্মাকে দুঃখী করে তুলেছিল| তাই প্রভু তাদের শএু হয়ে গিয়েছিলেন| প্রভু তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন| 11 কিন্তু প্রভু এখনও স্মরণ করেন বহুকাল আগে কি ঘটেছিল| তিনি স্মরণ করেন মোশি ও তাঁর লোকদের| প্রভু সেই এক জন যিনি মানুষকে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে নিয়ে এসেছেন| প্রভু তাঁর লোকদের নেতৃত্ব দেবার কাজে মেষপালকদের ব্যবহার করেছেন| কিন্তু মোশির মধ্যে তাঁর আত্মা সঞ্চার কারী প্রভু এখন কোথায়? 12 প্রভু তাঁর ডান হাত দিয়ে মোশিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| প্রভু মানুষকে সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে হাঁটার জন্য জলকে দুভাগ করে দেন| এই সব মহত্ কাজ করে প্রভু নিজেকে বিখ্যাত করে তোলেন| 13 গভীর সমুদ্রের মধ্য দিয়ে প্রভু তাঁর লোকদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন| ঘোড়ারা যেমন করে মরুভূমি পার হয়, তেমনি করে লোকরা পড়ে না গিয়ে হেঁটেছিল| 14 মাঠে বিচরণের সময় গরু যেমন পড়ে যায় না তেমনি সমুদ্রের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময়ও লোকেরা পড়ে যায়নি| লোকদের বিশ্রামস্থলের দিকে প্রভুর আত্মা নিয়ে যায়| সর্বদাই লোকরা সেখানে নিরাপদে ছিল| প্রভু সেই পথেই তাঁর লোকদের নেতৃত্ব দিয়েছেন| আপনি নেতৃত্ব দিয়ে নিজের নামকে চমত্কৃত করে তুলেছেন| 15 প্রভু, স্বর্গ থেকে নিজে তাকিযে দেখুন| এখন কি ঘটে চলেছে? আপনি স্বর্গস্থিত আপনার পবিত্র আবাস থেকে আমাদের দেখুন| আমাদের প্রতি আপনার সেই গভীর প্রেম কোথায়? আপনার ভিতর থেকে বের হয়ে আসা শক্তিশালী কর্মকাণ্ড কোথায়? আমার জন্য আপনার ক্ষমা কোথায়? আমার থেকে কেন আপনার উদার প্রেম সরিয়ে রেখেছেন? 16 দেখুন, আপনি আমাদের পিতা! অব্রাহাম আমাদের জানে না| ইস্রায়েল (যাকোব) আমাদের স্বীকার করে না| প্রভু, আপনি আমাদের পিতা! আপনি আমাদের ঈশ্বর যিনি সর্বদা আমাদের রক্ষা করেন| 17 প্রভু, কেন আপনি আমাদের আপনার কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছেন? কেন আপনি আপনাকে অনুসরণ করা আমাদের পক্ষে কঠিন করে তুলেছেন? প্রভু আমাদের কাছে ফিরে আসুন| আমরা আপনার দাস| আমাদের কাছে এসে আমাদের সাহায্য করুন| আমাদের পরিবারসমূহ আপনার অধিকারভুক্ত| 18 আপনার পবিত্র লোকরা মাত্র কিছু সময়ের জন্য তাদের জায়গায় বাস করত| তখন আমাদের শএুরা আপনার পবিত্র মন্দিরের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছিল| 19 বহু কাল ধরে আমরা সেই লোক ছিলাম যারা আপনার দ্বারা শাসিত ছিলাম না| যাদের আপনার নামে ডাকা হয়নি| কেন আপনি আকাশ ছিন্ন করে নেমে আসেন না? তাহলে পর্বতগুলি আপনার সামনে কাঁপবে|
1 আপনি যদি আকাশ ছিঁড়ে খুলে ফেলে পৃথিবীতে এসে পড়েন তবে সব পরিবর্তন হয়ে যাবে| পাহাড় আপনার সামনে গলে যাবে| 2 জ্বলন্ত গুল্মলতার মতো পাহাড় পুড়বে| আগুনের ওপর জলের মতো পাহাড় সেদ্ধ হবে| তখন আপনার শএুরা আপনার বিষয়ে জানতে পারবে| তারা যখন আপনাকে দেখবে তখন প্রত্যেক জাতিই ভয় পাবে| 3 কিন্তু সত্যিই আমরা এসব চাই না| আপনার সামনে পাহাড় গলে যাবে| 4 আপনার লোকরা সত্যিই আপনার কথা শোনেনি| আপনার লোকরা কখনও আপনার কথা শোনেনি| কেউ কখনও আপনার মতো এক জন ঈশ্বর দেখেনি| আপনিই একমাত্র, আর কোন ঈশ্বর নেই| যদি লোকরা ধৈর্য়্য় সহকারে আপনার সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করে তবেই আপনি তাদের জন্য মহান কাজ করবেন| 5 যারা ভাল কাজ করে তাদের সঙ্গেই আপনি থাকেন| যে পথে আপনি চান সেই পথেই তাঁরা জীবনযাপন করেন| কিন্তু অতীতে আমরা পাপ করেছি এবং তাই আপনি রুদ্ধ ছিলেন| কিন্তু এখন আমরা কি ভাবে রক্ষা পাবো? 6 আমরা সবাই পাপের জন্য নোংরা হয়ে উঠেছি| এমন কি আমাদের ভাল কাজও অশুদ্ধ| আমাদের ভালো কাজগুলো রক্তে রঞ্জিত পোশাকের মত| আমরা সবাই মরা পাতার মত| আমাদের পাপ আমাদের বাতাসের মতো বয়ে নিয়ে চলেছে| 7 আমরা আপনার উপাসনা করি না| আমরা আপনার নামে বিশ্বাস রাখি না| আমরা আপনাকে অনুসরণ করতে উত্সাহিত নই| তাই আপনি আপনার মুখ আমাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছেন| আপনি আমাদের পাপের জন্য আমাদের গলিযে দিয়েছেন| 8 কিন্তু প্রভু আপনি আমাদের পিতা| আমরা মাটির পিণ্ডের মতো এবং আপনি মৃত্শিল্পী| আপনার হাত আমাদের সৃষ্টি করেছে| 9 প্রভু, আমাদের ওপর রোধ পুষে রাখবেন না| আমাদের পাপ চির কাল মনে রাখবেন না| আমাদের দিকে দয়া করে তাকান! আমরা আপনারই লোক| 10 আপনার পবিত্র শহরগুলি পরিত্যক্ত| সেই শহরগুলি এখন মরুভূমির মতো| সিয়োনও একটা মরুভূমি! জেরুশালেম ধ্বংসপ্রাপ্ত! 11 আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার পবিত্র মন্দিরে আপনার উপাসনা করেছে| আমাদের মন্দির ছিল চমত্কার| কিন্তু সেই মন্দির পুড়ে গিয়েছে| আমাদের সমস্ত মূল্যবান বিষয় সম্পদগুলি ধ্বংস হয়ে গেছে| 12 এই সব জিনিস কি আপনাকে আমাদের প্রতি আপনার ভালবাসা দেখানো থেকে দূরে রাখবে? আপনি কি নীরবতা চালিযে যাবেন? আপনি কি আমাদের চির কাল শাস্তি দেবেন?
1 প্রভু বলেন, “যারা আমার কাছে উপদেশ নিতে আসেনি আমি তাদেরও সাহায্য করেছি| আমাকে যারা পেয়েছে তারা কেউ আমার দিকে তাকিযে ছিল না| আমি একটা জাতির সঙ্গে কথা বলেছিলাম যারা আমার নামে নামাঙ্কিত নয়| আমি বলেছিলাম, ‘আমি এখানে! আমি এখানে!’ 2 যারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল এমন লোকদের গ্রহণ করার জন্য আমি সারাদিন প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম| তারা আমার কাছে আসুক- আমি তাদের অপেক্ষায ছিলাম| কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে দূরে ছিল| তারা অসত্ পথে জীবনযাপন চালিযে গিয়েছিল| তাদের হৃদয় যা করতে চেয়েছিল তারা তাই করেছিল| 3 তারা আমার সামনে আমাকে সর্বদা রুদ্ধ করেছিল| তারা তাদের বিশেষ বাগানে পশুবলি দিত ও ধূনো জ্বালাত| 4 তারা কবরস্থানে বসে থাকে| তারা মৃত মানুষদের কাছ থেকে ভাল বার্তা পাবার জন্য প্রতীক্ষায থাকত| মৃতদের সঙ্গেও তারা বসবাস করত| তারা শুয়োরের মাংস খেত| তাদের ছুরি ও কাঁটাচামচ বাজে মাংস খেয়ে নোংরা হয়ে গিয়েছিল| 5 “কিন্তু তারা অন্যদের বলত, ‘আমার কাছে আসবে না! আমি যতক্ষণ না তোমাদের পরিষ্কার করছি ততক্ষণ তোমারা আমাকে স্পর্শ করবে না|’ এরা আমার চোখে ধোঁযার মত এবং এদের আগুন সর্বদাই জ্বলে|” 6 “দেখ, এখানে হিসাব আছে| মেটাতে হবে| হিসাব অনুযায়ীতুমি তোমার পাপের জন্য দোষী| এই হিসাব না মেটানো পর্য়ন্ত আমি শান্ত হব না এবং তোমাকে শাস্তি দিয়েই হিসাব পরিশোধ করব| 7 “তোমার ও তোমার পিতার পাপ সবই সমান| প্রভু বলেন, “পর্বতের ওপর ধূপ জ্বালাবার সময় তোমাদের পিতারা পাপ করেছে| তারা ঐ পর্বতগুলোর ওপর আমায় অবমাননা করেছে| এবং আমিই প্রথম যে তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম| আমি তাদের উচিত্ প্রাপ্য শাস্তি দিয়েছিলাম|” 8 প্রভু বলেন, “দ্রাক্ষাতে যখন নতুন সুরা থাকে মানুষ তখন তা বের করে নেয| কিন্তু তারা দ্রাক্ষাগুলিকে পারোপরি ধ্বংস করে না| তারা এই সব করে কারণ দ্রাক্ষা এরপরেও ব্যবহার করা যায়| আমি আমার দাসদের প্রতি ঠিং এংই জিনিষ করব| তাদের আমি পারোপুরি ধ্বংস করবো না| 9 যাকোবের (ইস্রায়েল) কিছু লোককে আমি রক্ষা করব| যিহূদার কিছু মানুষ আমার পাহাড় পাবে| আমার দাসরা সেখানে বাস করবে| আমি পছন্দ করে ঠিং করব কারা ওখানে বাস করবে| 10 তখন পলেষ্টীয় সংলগ্ন শারোণ উপত্যকা হবে মেষদের মাঠ| জেরুশালেমের উত্তরের দশ মাইল আখোর উপত্যকা হবে গরুর পালের বিশ্রামস্থল| এই সব হবে আমার লোকদের জন্য- যেসব লোকরা আমার খোঁজ করে| 11 “কিন্তু তোমরা প্রভুকে ত্যাগ করেছো, তাই তোমরা শাস্তি ভোগ করবে| তোমরা আমার পবিত্র সিয়োন পর্বতের কথা ভুলে গিয়েছো| তোমরা “ভাগ্য” ও “অদৃষ্ট” মূর্ত্তিগুলোকে পজৈো করতে শুরু করেছিলে| তোমরা তাদের নৈবেদ্য দিয়েছিলে| 12 কিন্তু আমি তোমাদের ভবিষ্যত্ নির্ণয করেছি| তোমরা তরবারির দ্বারা শেষ হবে| তোমরা সবাই খুন হবে| কেন? কারণ আমি তোমাদের ডাকলেও তোমরা উত্তর দিতে অস্বীকার করেছিলে! আমি কথা বললেও তোমরা শোন নি| আমি যে সব কাজকে অপংর্ম বলেছিলাম তোমরা সেগুলিই করেছো| আমি যা পছন্দ করি না তাই তোমরা করবে বলে ঠিং করেছিলে|” 13 তাই প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, “যদিও আমার দাসরা খাবে, তোমরা ক্ষুধার্ত থেকে যাবে| আমার দাসরা পান করতে পারলেও তোমরা তৃষ্ণার্ত থাকবে| আমার দাসরা সুখী হলেও তোমরা দুষ্ট লোকরা লজ্জিত হবে| 14 আমার দাসরা আনন্দে মাতোহারা হবে কিন্তু তোমরা দুঃখে কেঁদে ভাসাবে| তোমাদের হৃদয় ভেঙ্গে যাবে এবং তোমরা খুবই দুঃখিত হবে| 15 তোমাদের নাম আমার দাসদের কাছে বাজে শব্দের মতো শোনাবে|” আমার প্রভু তোমাদের হত্যা করবেন| আর তাঁর দাসদের দেবেন নতুন নাম| 16 লোকে এখন পৃথিবীর কাছে আশীর্বাদ প্লার্থনা করছে| কিন্তু ভবিষ্যতে তারা আশীর্বাদ চাইবে আস্থাবান ঈশ্বরের কাছে| এখন যারা পৃথিবীর নাম নিয়ে কোন প্রতিশ্রুতি করেছে তারা ভবিষ্যতে ঈশ্বরের নামে প্রতিশ্রুতি করবে| কেন? কারণ, অতীতের সমস্যার কথা সবাই ভুলে যাবে| তারা আমার চক্ষুর অন্তরালে আছে| 17 “আমি নতুন পৃথিবী ও নতুন স্বর্গ তৈরী করব| লোকরা অতীতের কথা মনে রাখবে না| সেই সব কথা তারা মোটেই চিন্তা করবে না| 18 আমার লোকরা সুখী হবে| এখন থেকে চিরকাল তারা আনন্দ করবে| কেন? আমি তাই করব| জেরুশালেমকে আমি তৈরী করব আনন্দ নগরী এবং সেখানকার লোকদের আমি করব খুব সুখী| 19 “তারপর জেরুশালেমের জন্য আমিও সুখী হব| আমি আমার নিজের লোকদের জন্য সুখী হব| শহরে আর কোন কান্না অথবা কান্নার শব্দ এবং দুঃখ থাকবে না| 20 দু-চারদিনের আযু নিয়ে কোন শিশু জন্মাবে না| অল্প সময় বেঁচে থেকে কেউই মরবে না| প্রতিটি শিশু ও বৃদ্ধ বহু বহু বছর বাঁচবে| 100 বছর বেঁচে থাকার পরও যে কোন ব্যক্তিকে যুবকদের মত লাগবে| এংজন লোক যদি 100 বছর বযস পর্য়ন্ত না বাঁচে লোকে তাকে অভিশপ্ত মানুষ বলে বিবেচনা করবে| 21 “শহরে কেউ যদি বাড়ি বানায় সে সেই বাড়িতে বসবাস করতে পারবে| কেউ যদি বাগানে দ্রাক্ষা চাষ করে তবে সে সেই দ্রাক্ষা ফল খেতে পারবে| 22 আর কখনও এমন হবে না যে এংজন বাড়ী তৈরী করবে আর অন্য জন তাতে বাস করবে| আর কখনও এমন হবে না যে এংজন বাগান তৈরী করবে আর অন্য জন তার ফল খাবে| আমার লোকরা গাছের মত দীর্ঘ জীবন পাবে| আমার মনোনীত লোকরা যা কিছু করবে তা উপভোগ করবে| 23 এংটি মৃত শিশুকে জন্ম দেবার জন্য মহিলারা আর কখনও প্রসব যন্ত্রনা ভোগ করবে না| শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে মহিলারা প্রসব যন্ত্রণায় আর ভীত হবে না| প্রভু আমার সব লোকদের ও তাদের শিশুদের আশীর্বাদ করবেন| 24 তারা চাইবার আগেই জানতে পারবে তাদের চাহিদা এবং তারা চাইবার আগেই সাহায্য পাবে| 25 নেকড়ে বাঘ এবং মেষশাবক এংসঙ্গে খাবে| সিংহ ছোট্ট বলদের সঙ্গে এংসঙ্গে বিচালি খাবে| আমার পবিত্র পর্বতে সাপ থাকলেও সে কাউকে কামড়াবে না| এমনকি কারও ভয়েরও কারণ হবে না|” এই সব প্রভু বলেছেন|
1 প্রভু যা বলেছেন তা হল, “আকাশ আমার সিংহাসন| আর পৃথিবী হল আমার পাদানি| তাই তোমরা কি মনে কর আমার জন্য একটা বাড়ি বানাতে পারবে? না, পারবে না| তোমরা কি আমার জন্য একটি বিশ্রামস্থল বানাতে পারবে? না! পারবে না! 2 আমি নিজেই এই সব সৃষ্টি করেছি| যা কিছু এখানে রয়েছে তা সবই আমার সৃষ্টি|” প্রভু নিজে থেকে বলেছেন এইসব কথা| “আমাকে বল, আমি কোন ধরণের লোকদের জন্য চিন্তা করি? আমি গরীবদের প্রতি যত্নবান| যারা খুব দুঃখী আমি যত্ন নিই তাদের| আর যারা আমার কথা মান্য করে আমি তাদেরও যত্ন করি| 3 কোন কোন লোক বলির জন্য ষাঁড় হত্যা করে কিন্তু তারা মানুষকেও নির্য়াতন করে| তারা মেষবলি দিলেও কুকুরের ঘাড় মটকে দেয়! তারা শস্য নৈবেদ্য দিলেও শুযোরের রক্তও নৈবেদ্য দেয়| সেই মানুষগুলি ধূপ জ্বালালেও ভালবাসে মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোকে| তারা নিজেদের পথে চলতে ভালবাসে এবং ভালবাসে তাদের ভয়ঙ্কর মূর্ত্তিগুলিকে| 4 তাই আমি ঠিক করেছি ওদের নিজেদের কৌশলই ব্যবহার করব| মানে আমি বলতে চাইছি ওরা যে সব জিনিসকে ভয় পায় সেই সব জিনিস ব্যবহার করেই ওদের শাস্তি দেব| আমি ওদের ডেকেছিলাম| কিন্তু ওরা শোনে নি| আমি কথা বলেছিলাম| ওরা শোনে নি| তাই আমি তাদের প্রতি একই জিনিস করব| আমি যাকে খারাপ বলি তারা সেই সব জিনিসই করেছিল| আমার যা অপছন্দ ওরা সেই কাজই করতে মনস্থ করেছিল|” 5 তোমরা যারা প্রভুর আদেশ মান্য কর তাদের উচিত্ প্রভুর কথা শোনা| “তোমাদের ভাইরা তোমাদের ঘৃণা করেছিল| তোমরা যেহেতু আমাকে অনুসরণ করেছিলে সেহেতু তারা তোমাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছিল| তোমাদের ভাইরা বলেছিল, ‘প্রভুকে সম্মান জানাবার সময় আমরা তোমাদের কাছে আসব| তখন তোমাদের সঙ্গে আমরাও সুখী হব|’ ঐ বাজে লোকগুলি শাস্তি পাবে| 6 শোন! শহর ও মন্দির থেকে একটা জোরালো শব্দ আসছে| সেই শব্দ শএুদের প্রভুর শাস্তি প্রদানের| প্রভু নিজের শএুদের প্রাপ্য শাস্তি দিচ্ছেন| 7 “যন্ত্রণা ভোগ করার আগে একজন মহিলা শিশুর জন্ম দিতে পারে না| যাকে জন্ম দিচ্ছে তাকে দেখার আগেই এক জন মহিলা অবশ্যই যন্ত্রণা ভোগ করে| একই ভাবে কোন লোক কি এক দিনে নতুন পৃথিবী সৃষ্টি হতে দেখেছে? কোন লোক কি এক দিনে একটি নতুন জাতির সৃষ্টি হতে দেখেছে? প্রসব যন্ত্রণার মত ঐ দেশটিরও প্রথম যন্ত্রণা থাকবে| জন্ম যন্ত্রণার পরই দেশটি তার ছেলেমেয়েদের অর্থাত্ একটি নতুন জাতির জন্ম দেবে| 8 9 একই ভাবে কোন নতুন জিনিসকে জন্মগ্রহণের অনুমতি না দিয়ে আমি কাউকে যন্ত্রণা দেব না|”প্রভু বলেন, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি, কোন নতুন জিনিষকে জন্ম দেওয়া ব্যতিরেকে আমি তোমাদের প্রসব যন্ত্রণা দেব না|” 10 জেরুশালেম সুখী হও| জেরুশালেমকে যারা ভালবাসে তারা সুখী হও| দুঃখ জনক ঘটনা জেরুশালেমে ঘটেছে| তাই তোমাদের কেউ কেউ বিষন্ন| কিন্তু এখন তোমাদের খুশি হওয়া উচিত্| 11 কেন? কারণ তার স্তন থেকে দুধ বেরিয়ে আসার মতো তোমরা করুণা পাবে| সেই দুধ সত্যি তোমাদের সন্তুষ্ট করবে| তোমরা সেই দুধ পান করে তার সমৃর্দ্ধিতে নিজেদের সন্তুষ্ট করবে| 12 প্রভু বলেন, “দেখো! আমি তোমাদের শান্তি দেব| শান্তি আসবে নদীর মতো| পৃথিবীর সব জাতির কাছ থেকে আসবে ঐশ্বর্য়| ঐশ্বর্য় আসবে বন্যার জলের মতো| তোমরা শিশুর মতো সেই ‘দুধ’ পান করবে| আমি তোমাদের কোলে তুলে নেব, হাঁটুতে বসিযে দোল খাওয়াব| 13 মা যেমন তার ছেলেকে আরাম দেয়, আমি তোমাদের সেই ভাবে আরাম দেব এবং তোমরা জেরুশালেমে আরাম পাবে|” 14 তোমরা যা দেখবে তাতেই আনন্দ পাবে| তোমরা ঘাসের মত মুক্ত এবং বড় হবে| প্রভুর দাসরা দেখতে পাবে তাঁর ক্ষমতা কিন্তু শএুরা দেখতে পাবে প্রভুর রোধ| 15 তাকাও, প্রভু আগুন নিয়ে আসছেন| ঝড়ের মতো প্রভুর রথ আসছে| প্রভু সেই সব লোকের ওপর তাঁর শাস্তি প্রদান করবেন| যখন তিনি রুদ্ধ, তখন তিনি ওইসব লোকদের আগুনের শিখা দিয়ে শাস্তি দেবেন| 16 প্রভু লোকদের বিচার করবেন| তারপর তিনি লোকদের আগুন আর তরবারি দিয়ে ধ্বংস করবেন| বহু মানুষেরই তিনি বিনাশ ঘটাবেন| 17 সেই সব লোকরা তাদের বিশেষ বাগানগুলিতে পূজোর আগে নিজেদের শুদ্ধ করবার জন্য স্নান করে| নিজেদের বিশেষ বাগানে তারা একে অন্যকে অনুসরণ করে| যখন তারা তাদের মূর্ত্তির পূজা করে তারপর প্রভু ঐসব লোকদের ধ্বংস করবেন|“ঐসব লোকরা শুয়োর ও ইঁদুরের মাংস এবং অন্যান্য নোংরা জিনিস খায়| তবে তারা সবাই একসঙ্গে ধ্বংস হবে|” প্রভু বয়ং একথা বলেছেন| 18 “ঐসব লোকদের চিন্তায ও কাজে রয়েছে অপকর্ম| তাই আমি আসছি ওদের শাস্তি দিতে| আমি সব জাতির সব মানুষকে একত্রিত করব| সব লোকরা একসঙ্গে এসে আমার ক্ষমতা দেখবে| আমি কাউকে কাউকে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখব এবং তাদের রক্ষা করব| 19 যারা রক্ষা পেয়েছে তাদের কয়েক জনকে আমি তর্শীশ, লিবিযা, লূদ, তূবল, গ্রীস ও অন্যান্য দূরবর্তী দেশসমূহে পাঠাব| ঐসব লোকরা কখনও আমার সম্বন্ধে শোনেনি| তারা কখনও আমার মহিমা দেখেনি| তাই রক্ষা পাওয়া ওই সব লোকরা অন্যান্য জাতিগুলিকে আমার মহিমার কথা জানাবে| 20 তারাই তোমাদের ভাইবোনদের অন্যান্য সমস্ত জাতি থেকে নিয়ে আসবে| তারা তোমাদের ভাইবোনদের আনবে জেরুশালেমে, আমার পবিত্র পর্বত সিয়োনে| তোমাদের ভাইবোনরা আসবে ঘোড়া, গাধা, উট, যুদ্ধে ব্যবহৃত ছোট ছোট যান প্রভৃতিতে চেপে| প্রভুর মন্দিরে ইস্রায়েলের মানুষরা যেমন উপহার নিয়ে যায় তেমনি তোমাদের ভাই-বোনরা উপহার হয়ে আসবে| 21 আমি বেছে কাউকে যাজক এবং কাউকে যাজকদের সাহায্যকারী বানাবো|” তা প্রভু বয়ং একথাগুলি বলেছেন| 22 “আমি একটি নতুন পৃথিবী তৈরী করব এবং এই নতুন পৃথিবী ও নতুন স্বর্গ থাকবে অনন্তকাল| একই ভাবে তোমাদের নাম ও তোমাদের শিশুরা আমার সঙ্গে থাকবে সর্বক্ষণ| 23 সব লোকরা প্রার্থনার দিনে আমার উপাসনা করতে আসবে| তারা প্রতি মাসের প্রথম দিন এবং বিশ্রামের দিন আমার উপাসনা করতে আসবে| 24 “ঐসব লোকরা থাকবে আমার পবিত্র শহরে এবং তারা শহরের বাইরে গেলেই আমার বিরুদ্ধে পাপ কাজে লিপ্ত মানুষদের মৃতদেহ দেখতে পাবে| সেই দেহে কৃমি থাকবে এবং সেই কৃমিরা কখনও মরবে না| আগুন পুড়িয়ে দেবে দেহগুলিকে এবং ঐ আগুন কখনও নিভবে না|”
1 এইগুলি হল যিরমিয়র বার্তাসমূহ| যিরমিয় ছিলেন হিল্কিয়ের পুত্র| যাজক পরিবারের সন্তান যিরমিয় বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর অঞ্চল অনাথোত্ শহরে বাস করতেন| 2 যিহূদার রাজা আমোনের পুত্র য়োশিযর ত্রযোদশ বছরের রাজত্বকালেপ্রভু প্রথম যিরমিয়র সঙ্গে কথা বলেছিলেন| 3 য়োশিযর পুত্র সিদিকিয়র একাদশ বছরের রাজত্বকাল পর্য়ন্ত অর্থাত্ ঐ বছরের পঞ্চম মাসে বন্দীদের জেরুশালেম থেকে নিয়ে আসার সময় পর্য়ন্ত যিরমিয় ঈশ্বরের কাছ থেকে বার্তা পেয়েছিলেন| 4 য়িরমিযের কাছে প্রভুর বার্তা পৌঁছালো| 5 প্রভুর বার্তা ছিল এই রূপ: “তোমাকে আমি তোমার মাতৃগর্ভে রূপ দেবার আগেই জানতাম| তোমার জন্মের আগে থেকেই আমি তোমাকে একটি বিশেষ কাজের জন্য নির্বাচন করে রেখেছিলাম| আমি তোমাকে জাতিসমূহের ভাব্বাদী হিসেবে মনোনীত করেছিলাম|” 6 যিরমিয় তখন বললেন, “কিন্তু প্রভু সর্বশক্তিমান, আমি তো কথাই বলতে জানি না| আমি এক জন বালক মাত্র|” 7 কিন্তু প্রভু আমাকে বললেন,“নিজেকে বালক বল না, যেখানে আমি তোমাকে পাঠাবো সেখানেই তোমাকে য়েতে হবে| আমি তোমাকে যা যা বলতে বলব তুমি কেবল তাই-ই বলবে| 8 কাউকে কখনও ভয় পাবে না| আমি সব সময় তোমার সঙ্গেই আছি এবং আমিই তোমাকে রক্ষা করবো|” এই হল প্রভুর বার্তা| 9 তারপর প্রভু তাঁর বাহু প্রসারিত করে আমার ঠোঁট স্পর্শ করে বললেন, “যিরমিয়, আমি আমার শব্দ তোমার ঠোঁটে স্থাপন করলাম| 10 আজ থেকে আমি তোমাকে এই জাতিগুলির এবং রাজ্যগুলির ভার দিলাম| তুমি তাদের উত্পাটন করবে এবং তাদের ছিঁড়ে ফেলে দেবে| তুমি তাদের ধ্বংস করবে এবং ক্ষমতাচ্যুত করবে| তুমিই সৃষ্টি করবে এবং বপণ করবে|” 11 প্রভুর এই বার্তা আমার কাছে এল: “যিরমিয়, কি দেখতে পাচ্ছো তুমি?”আমি প্রভুকে বললাম, “বাদাম কাঠের তৈরী একটি লাঠি দেখতে পাচ্ছি|” 12 প্রভু আমাকে বললেন, “তুমি ঠিকই দেখেছ এবং তোমার প্রতি আমার কথাগুলো যাতে সত্য হয় তার সম্বন্ধে নিশ্চিত হবার জন্য আমি লক্ষ্য রাখছি|” 13 আবার প্রভুর বার্তা আমার কাছে এসে পৌঁছালো: “যিরমিয়, এবার তুমি কি দেখতে পাচ্ছো?”আমি উত্তর দিলাম, “একটি ফুটন্ত গরম জলভর্তি পাত্র দেখতে পাচ্ছি| পাত্রটির উত্তর দিকের অগ্রভাগ উথলে পড়ছে|” 14 প্রভু আমাকে বললেন, “উত্তর দিক থেকে ভযানক কিছু ঘটতে চলেছে| এটি এই দেশের সমস্ত লোকের ওপর ঘটবে| 15 খুব অল্প কালের মধ্যে, আমি উত্তর দিকের দেশগুলির সমস্ত লোকদের ডাকব|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| “ওই দেশগুলির রাজারা এসে জেরুশালেমের ফটকের কাছে সিংহাসন প্রতিষ্ঠা করবে| তারা জেরুশালেমের প্রাচীর আক্রমণ করবে| তারা পাশাপাশি যিহূদার প্রতিটি শহর আক্রমণ করবে| 16 এবং আমি আমার লোকদের বিরুদ্ধেই রায় ঘোষণা করব| আমি এরকম করব কারণ ওরা খারাপ মানুষ এবং ওরা আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে| আমাকে ছেড়ে গিয়েছে| ওরা অন্য দেবতাদের প্রতি উত্সর্গ নিবেদন করেছে| নিজেদের হাতে গড়া মূর্ত্তিকে পূজা করেছে| 17 “সুতরাং যিরমিয় তৈরী হও| উঠে দাঁড়াও এবং লোকদের সঙ্গে কথা বলো| আমি তোমাকে যা যা বলতে বলেছি তাদের তুমি তাই বলবে| তাদের সামনে ভয় পেযো না| এই লোকদের সম্বন্ধে ভয় পেযো না, নাহলে আমি কিন্তু ওদের ভয় পাওয়ার জন্য তোমাকে একটি ভাল কারণ দেব| 18 আর আমি আজ থেকে তোমাকে দুর্ভেদ্য এক নগরীর মতো তৈরী করব| তুমি লৌহ-স্তম্ভের মতো কঠিন, পিতলের দেওয়ালের মতো নিরেট| এই যিহূদা দেশের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে তুমি সক্ষম হবে| সে য়েই হোক, রাজা অথবা নেতা, যাজক অথবা সাধারণ মানুষ, সবার চাইতে তুমিই হবে সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিধর| 19 সারা দেশের মানুষ তোমার সঙ্গে লড়াই করলেও, তোমাকে কেউ হারাতে পারবে না| কারণ আমি সব সময় তোমার সঙ্গে আছি| আমিই তোমাকে রক্ষা করব|” এই হল প্রভুর বার্তা|
1 প্রভুর বার্তা পৌঁছেছিল য়িরমিযর কাছে| প্রভুর বার্তা ছিল: 2 “যিরমিয় যাও এবং জেরুশালেমের লোকদের সঙ্গে কথা বল| তাদের বলো:“‘যখন তোমরা একটি নবীন জাতি ছিলে, তখন তোমরা আমার প্রতি খুব বিশ্বস্ত ছিলে| আমাকে অনুসরণ করতে নতুন কনের (প্রেমের) মতো| মরুভূমির মাঝেও তোমরা আমাকে অনুসরণ করেছ| অনুসরণ করে গিয়েছো মৃত্তিকার মধ্যে দিয়ে- অথচ য়ে মৃত্তিকায কখনো চাষ করা হয়নি| 3 ইস্রায়েলের লোকরা ছিল প্রভুর পবিত্র উপহার| তারা ছিল প্রথম ফল য়েগুলি ঈশ্বরের দ্বারা ফলাবার কথা ছিল| যারা তাদের ক্ষতি করতে চাইত, তারা দোষী সাব্যস্ত হত| এই সব দুষ্ট লোকদের জীবনে খারাপ ঘটনাসমূহ ঘটেছিল|”‘ এই ছিল প্রভুর বার্তা| 4 হে যাকোবের পরিবার, ইস্রায়েল পরিবারের সকল গোষ্ঠী প্রভুর বার্তা শোন| 5 প্রভু যা বললেন তা হল, “তোমরা কি মনে করো য়ে আমি তোমাদের পূর্বপুরুষেদের প্রতি সুবিচার করি নি? সেই জন্যই কি তারা আমার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে? তোমাদের পূর্বপুরুষরা মূল্যহীন মূর্ত্তিসমূহের পূজা করেছিল এবং নিজেরাই মূল্যহীন হয়ে পড়েছিল| 6 তোমাদের পূর্বপুরুষরা বলেনি য়ে, ‘তিনি কোথায় যিনি আমাদের শুষ্ক পাথুরে জমির মধ্য দিয়ে, অন্ধকার বন্ধ্যা জমির মধ্য দিয়ে এবং বিপজ্জনক রাস্তার মধ্য দিয়ে মরুভূমি পার করে এনেছিলেন?’ 7 প্রভু বললেন, “আমিই সেই য়ে তোমাদের এই ভালো উর্বর দেশে নিয়ে এসেছিলাম যাতে তোমরা এর ফল ও শস্যসমূহ খেতে পাও এবং খাদ্য জোগাতে পারো| তোমরা আমার মাটিকে ‘নোংরা’ করে দিলে| আমি তোমাদের একটি ভালো জমি দিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা তাকে একটি খারাপ জায়গায় পরিণত করে দিলে| 8 “যাজকরা প্রশ্ন করেনি, ‘কোথায় সেই প্রভু?’ যারা বিধিটি জানত তারা আমাকে জানতে চায়নি| ইস্রায়েলের নেতারা আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছিল| ভাব্বাদীগণ বাল মূর্ত্তির নাম নিয়ে ভাব্বাণী করেছিল| তারা মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর পূজা করেছিল| তারা মূর্ত্তির অজুহাত দেখিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের পূজায বসিযেছে| ইস্রায়েলবাসী ভেবেছিল এই মূর্ত্তিই তাদের জন্য ফলনশীল জমি তৈরী করেছে| তারা বিশ্বাস করেছিল, মূর্ত্তিই বুঝি ঝড়, বৃষ্টি এনে দিয়েছে|” 9 প্রভু বললেন, “তাই আমি তোমাদের আবার অভিযুক্ত করছি| অভিযুক্ত করব তোমাদের পুত্র পৌত্রগণদেরও| 10 যাও, সমুদ্রের ওপারে কিত্তীযদের দ্বীপে| কোন এক জনকে কেদরের দেশে পাঠাও| দেখ আর কেউ কখনও এরকম করেছে কিনা| সেখানে দেখো কেউ তোমাদের মতো এই কাজ করছে কিনা| 11 কোনও দেশ কি তাদের পুরানো দেবতাকে ছুঁড়ে ফেলে নতুন দেবতার উপাসনা করেছে? কিন্তু তাদের সেই দেবতারা সত্যিকারের দেবতা নয়| কিন্তু আমার লোকরা তাদের মহিমাময ঈশ্বরের পরিবর্তে মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর পূজা শুরু করেছিল| 12 “হে আকাশমণ্ডল, যা সব ঘটেছিল তাতে আশ্চর্য়্য় হও! প্রচণ্ড ভয়ে কাঁপতে থাকো!” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 13 “আমার দেশের লোকরা দুটি ভুল কাজ করেছে| প্রথমতঃ যদিও আমি একটি জীবন্ত জলের ঝর্ণা তবু তারা আমার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে| আমিই জলের অস্তিত্ব| দ্বিতীয়তঃ তারা নিজেদের জন্য কূপ খনন করেছে| (তারা ভিন্ন দেবতার উপর আস্থা রেখেছে|) কিন্তু সেগুলি ভাঙ্গা কূপ| জলাধার হতে পারে না| 14 “ইস্রায়েলবাসীরা কি দাস হয়ে গিয়েছে? তারা কি সেই লোকের মত হয়ে গেছে য়ে দাস হয়েই জন্মেছিল? লোকরা কেন ইস্রায়েলীয়দের ধনসম্পদ নিয়ে নিয়েছিল? 15 সিংহ শাবকরা (শএুরা) ইস্রায়েলের প্রতি গর্জন করে উঠেছিল| তারা তার প্রতি হুংকার করেছে| তারা ইস্রায়েল দেশটিকে ধ্বংস করেছে| এমনকি শহরগুলিকে পোড়ানো হয়েছিল এবং সেখানে কোন মানুষ পড়ে ছিল না| 16 মিশরের দুটি শহর নোফের এবং তফনহেষের লোকরাও তোমাদের মাথাকে গুঁড়িযে দিয়েছে| 17 এই ক্ষতির কারণ তোমরা নিজেরাই| কেননা প্রভু তোমার ঈশ্বর যখন তোমাদের সঠিক পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তোমরা নিজেরাই তাঁকে ত্যাগ করে দূরে সরে গিয়েছ| 18 যিহূদার লোকরা, এবার ভাবো: ওটি কি তোমাদের মিশরে য়েতে সাহায্য করেছিল? ওটি কি তোমাদের সাহায্য করেছিল নীল নদের জল পান করতে? না! সেটি কি তোমাদের অশূরে য়েতে সাহায্য করেছিল? ওটি কি তোমাদের সাহায্য করেছিল ফরাত্ নদীর জল পান করতে? না! 19 না! তোমরা খারাপ কাজ করেছিলে এবং সেই জন্য তোমাদের শাস্তি পেতে হবে| তোমাদের বিক্সমূহ আসবে এবং সেই সংকট তোমাদের উচিত্ শিক্ষা দেবে| তোমরা একবার ভেবে দেখো, তাহলেই বুঝতে পারবে ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরিণাম কি মারাত্মক| আমাকে ভয় না পাওয়া এবং সম্মান না করা নিতান্তই মুর্খামি|” এই ছিল প্রভু সর্বশক্তিমানের বার্তা| 20 “যিহূদা, অনেককাল আগে তুমি তোমার জোযাল ভেঙ্গেছিলে| তুমি আমাকে তোমায় নিয়ন্ত্রণ করতে অস্বীকার করেছিলে| তুমি আমাকে বলেছিলে, ‘আমি তোমার অনুগামী নই|’ সেই সময় থেকে, প্রতিটি পর্বতের চূড়ায় এবং প্রতিটি গাছের নীচে তুমি বেশ্যা বৃত্তিতে লিপ্ত ছিলে| 21 যিহূদা, আমি তোমাকে বিশেষ দ্রাক্ষা গাছ হিসেবে বপন করেছিলাম| তোমার বীজে তো কোন দোষ ছিল না| তাহলে কি করে তুমি একটি ভিন্ন জাতের দ্রাক্ষা কুঞ্জে পরিণত হলে, য়েটি শুধুই বাজে দ্রাক্ষা ধারণ করে? 22 তুমি যদি বার বার সাবান দিয়ে নিজেকে ধুয়ে ফেল, তবুও আমি তোমার দোষ দেখতে সক্ষম হবো|” এই ছিল প্রভু ঈশ্বরের বার্তা| 23 “যিহূদা, কি করে তুমি বলতে পারলে, ‘আমি অশুচি নই| কিন্তু তুমি কি বাল মূর্ত্তির পেছনে ছুটে বেড়াও নি?’ একবার ভাবো এই উপত্যকায় তুমি আর কি কি করেছিলে| তুমি এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় দৌড়ে বেড়ানো একটি স্ত্রী-উটের মত| 24 তুমি একটি বন্য গর্দ্দভীর মতো য়ে মরুভূমিতে বাস করে| কামাবেশে সে যখন বাতাসের গন্ধ শোঁকে তখন কে তাকে থামাতে পারে? সমস্ত পুরুষ যারা তাকে চায়, তাদের নিজেদের ক্লান্ত করবার দরকার নেই কারণ কামএযিার সময় তারা তাকে সহজেই খুঁজে পাবে| 25 যিহূদা মূর্ত্তির পিছনে ছোটা বন্ধ করো| ঐ দেবতাদের জন্য পিপাসিত হওয়া বন্ধ করো| কিন্তু তুমি বললে, ‘আমি ফিরতে পারব না| আমি ঐ দেবতাদের ভালোবাসি| আমি ওদেরই পূজা করতে চাই|’ 26 “এক জন চোর চুরি করবার সময় মানুষের হাতে ধরা পড়লে য়েমন লজ্জা পায়, তেমনি ইস্রায়েলীয়রা লজ্জিত, ইস্রায়েলের রাজারা, যাজকরা এবং ভাব্বাদীরাও লজ্জিত| 27 বস্তুত, তারা একটি কাঠের টুকরোকে বলে, ‘তুমি আমার পিতা!’ তারা একটি পাথরকে বলে, ‘তুমি আমাকে জন্ম দিয়েছ|’ তারা আমার দিকে তাকায না| তারা আমার দিকে তাদের পেছন ফিরিয়েছে| কিন্তু বিপদে পড়লে এই যিহূদার লোকরাই লজ্জিত হয়ে আমাকে বলবে, ‘এসো, আমাদের উদ্ধার করো|’ 28 দেখা যাক, তোমাদের তৈরী করা মূর্ত্তিরা এসে বিপদ থেকে তোমাদের উদ্ধার করতে পারে কি না? যিহূদা তোমাদের যত শহর, তত দেবতা| দেখি তারা কি ভাবে তোমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করে| 29 “কেন আমার সঙ্গে তর্ক করছো? তোমরা সবাই আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছো|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 30 “আমি তোমাদের, যিহূদার লোকদের শাস্তি দিয়েছিলাম, কিন্তু সেটা সাহায্য করেনি| তোমরা কোন শিক্ষা পাও নি| য়ে সব ভাব্বাদীরা তোমাদের কাছে এসেছিল তাদেরও তরবারি দিয়ে হত্যা করেছো| তোমরা হিংস্র সিংহের মতো ভাব্বাদীদের হত্যা করেছো|” 31 ওহে, এই প্রজন্মের লোকরা, প্রভুর বার্তা মন দিয়ে শোন! “আমি কি ইস্রায়েলীয়দের কাছে মরুভূমির মতো শুষ্ক ছিলাম? আমি কি তাদের কাছে শুধুই অন্ধকার এবং বিপদের পূর্বাভাস ছিলাম? আমার লোকরা বলেছে, ‘আমরা স্বাধীনভাবে নিজেদের মতো চলতে পারি| আমরা আর তোমার কাছে ফিরে আসব না প্রভু!’ তারা একথাগুলো কি করে বলতে পারল? 32 কোন যুবতী তার গহনাকে ভুলতে পারে না| কোন কনে তার বিয়ের পোশাকের কথা ভুলে যায় না| কিন্তু আমার লোকরা আমাকে বহুবার ভুলে গিয়েছে| 33 “যিহূদা, তুমি খুব ভালো করেই জানো কভাবে প্রেমিকদের (মূর্ত্তির) পেছনে দৌড়তে হয়| তুমি কুকর্ম করতে শিখে গিয়েছিলে| 34 তাই তোমার হাতে নিরীহ গরীব মানুষের রক্তের দাগ| সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করেও তোমার শান্তি হয় নি| তুমি তাদের তোমার বাড়ীতে চুরি করতে দেখনি| তুমি তাদের বিনা কারণে মেরে ফেলেছিলে| 35 (এত কিছুর পরও) তুমি কিন্তু বলছো, ‘আমি নির্দোষ| ঈশ্বর আমার প্রতি রুদ্ধ নন|’ তাই আমিও তোমাকে মিথ্য়ে বলার জন্য দোষী সাব্যস্ত করলাম| কেননা তুমি বলছো, ‘আমি কোন অন্যায় করি নি|’ 36 তুমি সহজেই নিজের মন বদলাও| অশূর তোমায় হতাশ করেছিল বলে তুমি অশূরকে ত্যাগ করেছিলে| এবং তুমি সাহায্যের জন্য মিশরের দিকে ঘুরেছিলে| মিশরও তোমাকে নিরাশ করবে| 37 তাই তুমি মিশরও ত্যাগ করবে| এবার তুমি লজ্জায মুখ লুকোলে| তুমি য়ে সমস্ত দেশগুলিকে বিশ্বাস করেছিলে তারা কেউই তোমাকে জেতার জন্য সাহায্য করতে পারেনি| কারণ প্রভু সেই দেশগুলিকে বাতিল করেছিলেন|
1 “একজন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে যাওয়ার পর, সেই স্ত্রী যদি অন্য এক পুরুষের সঙ্গে পুনরায় ঘর বাঁধে, তাহলে কি সেই স্বামী আবার তার প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে ফিরে যায়? না| কিন্তু সে যদি ঐ মহিলাটির কাছে আবার ফিরে যায় তাহলে সেই দেশ অপবিত্র হয়ে যাবে| যিহূদা তুমিও পতিতার মতো| তুমি এত জন প্রেমিকদের (মূর্ত্তির) সঙ্গে ছিলে, তুমি কি এখন আমার কাছে ফিরে আসবে?” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 2 “যিহূদা বৃক্ষ শূন্য পর্বতশৃঙ্গগুলোর দিকে তাকাও| সেখানে এমন কোন শৃঙ্গ আছে কি যেখানে তুমি তোমার প্রেমিকদের (মূর্ত্তির) সঙ্গে য়ৌনকর্মে লিপ্ত হও নি? তোমার সতীত্ব লঙিঘত হয়নি? আরব্বাসী য়েমন মরুভূমিতে অপেক্ষায বসে থাকে তেমন তুমিও প্রত্যেকটি রাস্তায় অপেক্ষা করেছো| তোমার এই সব প্রিয প্রেমিকদের জন্য| তুমিই অসংখ্য খারাপ কাজ আর ব্যভিচারের মাধ্যমে দেশের মাটিকে অপবিত্র করেছ| তুমি আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছো| 3 তোমার পাপের কারণে দেশ জুড়ে খরা দেখা দিয়েছে এবং বসন্তকালীন বৃষ্টি আসেনি| তবুও তোমার লজ্জাহীন মুখে পতিতার কামুক দৃষ্টি| কৃতকার্য়ের জন্য তোমার কোনও লজ্জা নেই| অনুশোচনা নেই| 4 কিন্তু তুমি আমাকে ‘পিতা’ বলে ডাকছো| তুমি বলছ, ‘ছোটবেলা থেকেই তুমি আমার বন্ধু|’ 5 তুমি এও বলেছিলে য়ে, ‘ঈশ্বর আমার প্রতি সব সময় রুদ্ধ হয়ে থাকবেন না| ঈশ্বরের রোধ চিরকাল থাকে না|’ “যিহূদা, তুমি একথা বললেও যত রকম শযতানি কাজ করা সম্ভব তুমি করেছ|” 6 যিহূদার রাজা য়োশিযের সময়ে প্রভু আমার সঙ্গে কথা বললেন| প্রভু বললেন, “যিরমিয়, ইস্রায়েল য়ে সব খারাপ কাজ করেছে তা কি তুমি দেখেছ? তুমি কি দেখেছ সে আমার প্রতি কতটা অবিশ্বাসী ছিল? প্রত্যেকটি মূর্ত্তির সঙ্গে সে ব্যভিচারে মেতে উঠেছিল| ব্যভিচারের সাক্ষী রয়েছে প্রতিটি পর্বতশৃঙ্গ, প্রতিটি গাছের ছায়া| 7 আমি নিজের মনে ভেবেছিলাম, ‘এইবারে নিশ্চয়ই ইস্রায়েল তার সমস্ত খারাপ কাজ করে আমার কাছে ফিরে আসবে|’ কিন্তু সে ফিরে আসেনি| 8 ইস্রায়েলের মতোই বিশ্বাসঘাতক তার বোন যিহূদাও স্বচক্ষে দেখেছিল তার দিদির ব্যভিচার| ইস্রায়েলের এই বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আমি তাকে ত্যাগ করেছিলাম| ইস্রায়েলের এই দশা দেখে তার বিশ্বাসঘাতক বোন যিহূদা কিন্তু এতটুকু শঙ্কিত হয়নি| আমার বিধানে যিহূদা ভীত হবার পরিবর্তে সে দিদির প্রদর্শিত পথেই চলতে শুরু করেছিল| সেও অবশেষে পতিতার মতো আচরণ শুরু করল| 9 ব্যভিচারিতায লিপ্ত হয়ে যিহূদাও তার দেশকে কলঙ্কিত করল| সে কাঠের এবং পাথরের মূর্ত্তিসমূহ পূজো করে ব্যভিচার করেছিল| 10 যিহূদা, ইস্রায়েলের বিশ্বাসঘাতক বোন আমার কাছে কখনোই সর্বান্তঃকরণে ফিরে আসেনি| শুধু বারবার ফিরে আসার ছল করেছিল|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 11 প্রভু আমাকে বললেন, “ইস্রায়েল আমার প্রতি বিশ্বস্ত ছিল না| কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতার প্রশ্োন যিহূদার চেয়ে তার অজুহাত অপেক্ষাকৃত উত্কৃষ্ট ছিল| 12 যিরমিয় উত্তর দিকে তাকিযে দেখ এবং এই বার্তা বল:‘ওহে বিশ্বাসহীন ইস্রায়েলবাসী, তোমরা ফিরে এসো|’ এই ছিল প্রভুর বার্তা| ‘আমি তোমাদের প্রতি আর কঠোর হবো না| আমি দযার সাগর|’ ‘আমি চিরকাল তোমাদের প্রতি রুদ্ধ থাকব না| এই ছিল প্রভুর বার্তা|’ 13 তোমাদের পাপকে তোমাদের উপলব্দি করা এবং স্বীকার করা উচিত্| তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়েছিলে- সেটাই হল তোমাদের পাপ| তোমরা প্রতিটি গাছের নীচে অন্য জাতিসমূহের মূর্ত্তিদের পূজো করেছিলে| তোমরা আমাকে মান্য করোনি| তাদের প্রতিষ্ঠা করেছিলে প্রতিটি গাছের তলায়|”‘ এই ছিল প্রভুর বার্তা| 14 “হে লোকরা, তোমরা বিশ্বস্ত নও| কিন্তু ফিরে এসো আমার কাছে!” এই ছিল প্রভুর বার্তা|“আমি হলাম তোমাদের প্রভু| এদেশের প্রত্যেকটি শহর থেকে এক জন এবং প্রত্যেকটি পরিবার থেকে দুজনকে আমি সিয়োনে নিয়ে আসব| 15 তারপর আমি তোমাদের নতুন শাসকগোষ্ঠী নির্বাচন করে দেব| সেই শাসকবৃন্দ আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে| তারা জ্ঞান এবং বিবেচনার সঙ্গে তোমাদের নেতৃত্ব দেবে| 16 সে সময় তোমরা সংখ্যায় বাড়বে| অনেকেই তখন সে দেশে বাস করবে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা|“কেউ সেই সময় আর বলতে পারবে না য়ে আমার মনে পড়ে সেইসব দিনের কথা যখন আমাদের কাছে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক ছিল|’ এমন কি তারা আর সেই পবিত্র সিন্দুক নিয়ে ভাববেও না| তারা সেই সিন্দুককে মনেও রাখতে পারবে না| তারা সেটা হারিযেও ফেলবে না| তারা আর কখনও অন্য একটি পবিত্র সিন্দুক তৈরী করবে না| 17 সেই সময় এই জেরুশালেম শহর ‘প্রভুর সিংহাসন’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠবে| এবং প্রভুর নামকে সম্মান জানাতে সমস্ত জাতি একত্রে জেরুশালেমে এগিয়ে আসবে| তারা আর তাদের উদ্ধত, জেদী এবং শযতান হৃদয়কে অনুসরণ করবে না| 18 সেই দিনগুলিতে যিহূদা এবং ইস্রায়েলের পরিবারবর্গ একসঙ্গে মিলিত হবে| এবং তারা একসঙ্গে উত্তর দিকের দেশ থেকে, য়ে দেশ আমি অধিকারের জন্য তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম সে দেশে আসবে| 19 “আমি, প্রভু মনে মনে বললাম, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে নিজের সন্তানের মতো ব্যবহার করতে চাই| আমি তোমাদের একটা মনোরম দেশ উপহার দিতে চাই, য়েটা অন্য সকল দেশের চেয়ে সেরা|’ আমি ভেবেছিলাম তোমরা আমাকে ‘পিতা’ বলে ডাকবে| আমাকেই অনুসরণ করবে| 20 কিন্তু তোমরা একটি নারীর মতো য়ে তার স্বামীর প্রতি অবিশ্বস্ত| ইস্রায়েলের পরিবারবর্গ, তোমরা আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকলে না|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 21 তোমরা বন্ধ্যা পাহাড়গুলি থেকে কান্না শুনতে পাবে| ইস্রায়েলীয়রা কাঁদছে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে| তারা শযতান হয়ে উঠেছিল| তারা ভুলে গিয়েছিল তাদের প্রভু ঈশ্বরকে| 22 প্রভু আরও বললেন, “হে ইস্রায়েলীয়রা, তোমরা আমার প্রতি বিশ্বস্ত নও| তবু তোমরা আমার কাছে ফিরে এসো আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব|” ইস্রায়েলীয়দের বলা উচিত্, “তুমিই প্রভু আমাদের ঈশ্বর| আমাদের তোমার কাছেই ফিরে আসা উচিত্| 23 পাহাড়ের উপর মূর্ত্তিপূজো এবং উচ্ছৃঙ্খল অনুষ্ঠান করে আমরা ভুল করেছিলাম| ইস্রায়েলের মুক্তি প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের কাছ থেকে অবশ্যই আসে| 24 ঐ বাল মূর্ত্তি আমাদের পূর্বপুরুষদের সমস্ত ধনসম্পদ খেযে ফেলেছে| সে তাঁদের মেষ, গবাদিপশু, পুত্র ও কন্যাদের খেযে ফেলেছে| 25 লজ্জায আমাদের মরে য়েতে ইচ্ছে করছে| আমাদের লজ্জা আমাদের কম্বলের মত ঢেকে ফেলুক| আমাদের সর্বশক্তিমান প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করে| আমাদের পিতৃপুরুষদের মতো আমরাও পাপ করেছি| ছোটবেলা থেকেই আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে অমান্য করে এসেছি|”
1 এই বার্তা প্রভুর কাছ থেকে এলো| “ইস্রায়েল, যদি তুমি ফিরতে চাও তাহলে আমার কাছে ফিরে এসো| ভ্রান্ত দেবতাদের মূর্ত্তিগুলো ছুঁড়ে ফেলে দাও| আমার কাছ থেকে চ্যুত হয়ে বিপথগামী হযো না| 2 যদি কেবলমাত্র এগুলি কর তাহলেই কোন প্রতিজ্ঞা করবার সময় তোমরা আমার নাম ব্যবহার করতে পারবে| প্রতিশ্রুতি গ্রহণের সময় বলতে পারবে, ‘প্রভুর নিশ্চিত অস্তিত্বের দিব্য|’ এই কথাগুলো তোমরা সত্য, উচিত্ এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে| তাহলে জাতিসমূহ তাঁর আশীর্বাদ পাবে| তারপর তারা তাঁকে প্রশংসা করতে পারবে| তোমার দেশবাসী প্রভুর কার্য়কলাপ ঘিরে গর্ব অনুভব করবে|” 3 যিহূদা এবং জেরুশালেমের মানুষকে এই কথাগুলি প্রভু বলেছিলেন:“তোমাদের জমিগুলি চষা হয়নি| জমিতে লাঙল দাও! নিজেদের পতিত জমি চাষ করো| বীজ বোনো সেই জমিতে| কাঁটাবনে বীজ বপন করো না| 4 প্রভুর লোক হয়ে যাও! তোমাদের হৃদয়গুলোকে পরিবর্তন করো| আত্মাকে শুদ্ধ করো| হে যিহূদা ও জেরুশালেমের মানুষ, তোমরা যদি নিজেদের না শোধরাও তাহলে আমি রুদ্ধ হয়ে যাবো| আমার রোধ আগুনের মতো দ্রুত গতিতে তোমাদের সবাইকে বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেবে| সেই আগুন নেভানোর ক্ষমতা কারো হবে না| তোমাদের অসত্ কার্য়কলাপের জন্যই এইগুলো হবে|” 5 “যিহূদার লোকদের এই খবর বল:জেরুশালেম শহরের প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে বল, ‘দেশের সর্বত্র শিঙা বাজাও|’ জোরে চিত্কার কর: ‘এস, আমরা একত্র হই এবং প্রতিরক্ষার জন্য দূর্গবিশিষ্ট শহরগুলিতে যাই|’ 6 সিয়োনের দিকে নিশান পতাকা ওড়াও| বাঁচতে চাও তো তাড়াতাড়ি করো| অপেক্ষা কোরো না| যা বলছি তাই কর কারণ আমি উত্তর দিক থেকে বিপর্য়য বয়ে আনছি| আমি এক ভয়ঙ্কর ধ্বংস ঘটাবো|” 7 এক “সিংহ” তার গুহা থেকে বেরিয়ে এসেছে| দেশসমূহের এক বিনাশকর্তা তার যাত্রা শুরু করেছে| তোমাদের দেশকে ধ্বংস করতে সে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে| ভয়ঙ্কর বিপর্য়য ঘনিয়ে আসছে এই দেশের ওপর, কোন মানুষ জীবিত থাকবে না, সব কটি শহর ধ্বংসস্তূপ হয়ে যাবে| 8 সুতরাং শোকের পোশাক পরে তোমরা চিত্কার করে কাঁদো! কারণ প্রভু আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন|” 9 প্রভু বললেন, “যখন এগুলি ঘটবে, তখন রাজা এবং তাঁর পারিষদরা তাদের সাহস হারিযে ফেলবে, যাজকরা দারুণ ভয় পেয়ে যাবেন এবং ভাব্বাদীরা য়ত্পরোনাস্তি বিহবল হবেন|” 10 তখন আমি, যিরমিয় বললাম, “হে প্রভু আমার মনিব, আপনি অবশ্যই যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের এই বলে প্রতারণা করেছেন: ‘তোমরা শান্তি পাবে|’ কিন্তু এখন তরবারিটি তাদের গলার দিকে লক্ষ্য করে রয়েছে|” 11 একই সঙ্গে সেই সময় যিহূদা এবং জেরুশালেম বাসীদের জন্য এই বার্তা প্রেরিত হবে: “হে আমার লোক, অনাবৃত পর্বতশৃঙ্গ থেকে তপ্ত বাতাস বয়ে আসবে| এই ঝড় ছুটে আসবে মরুভূমি থেকে| এ ঝড় কোন মৃদু বাতাস নয়, যার দ্বারা কৃষকরা তাদের শস্যকণা ভূমি থেকে ঝেড়ে আলাদা করে নেয| 12 এই ঝড় অনেক বেশী শক্তিশালী এবং এটা আমার কাছ থেকেই আসে| এখন আমি আমার বিচারের রায় ঘোষণা করব যিহূদাবাসীদের বিরুদ্ধে|” 13 দেখো| মেঘের মতো শএু নড়ে উঠছে| তার রথসমূহকে দেখাচ্ছে য়েন ভযাবহ ঝড়| তার ঘোড়াগুলো ঈগলদের চাইতেও দ্রুতগামী| এটি আমাদের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক| আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবো| 14 হে জেরুশালেমবাসী, কু-মতলব ত্যাগ করো| হৃদয় থেকে সমস্ত শযতানি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দাও| আত্মাকে শুদ্ধ করলে তবেই তোমরা রক্ষা পাবে| 15 ডান দেশেরসম্প্রদাযের বার্তাবাহকের কথা শোন| ইফ্রযিমের পর্বতমালা থেকে কেউ দুর্ঘটনার খবর নিয়ে আসছে| 16 “সারা জেরুশালেমবাসীকে সেই খবর জানিয়ে দাও| বহুদূরের দেশ থেকে শএুরা যিহূদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছে| ঐ শএুরা চিত্কার করে যিহূদার শহরগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ধ্বনি দিচ্ছে| 17 জেরুশালেমকে তারা সম্পূর্ণরূপে ঘিরে ফেলেছে| য়েমন একটি মাঠে লোকরা লক্ষ্য রাখে| যিহূদা তুমি আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিলে তাই শএু পক্ষ তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 18 “তোমার জীবনযাত্রা এবং কার্য়কলাপই এই সমস্যা সৃষ্টি করেছে| তোমার শযতানি তোমার জীবনকে খুব কঠোর করেছে| এই মূহুর্তে তোমার শযতানিই তোমার যন্ত্রণার কারণ| য়েটা তোমার হৃদয়ের গভীরে আঘাত করছে|” 19 হায! দুঃখ, যন্ত্রণা এবং চিন্তায আমি কুঁকড়ে যাচ্ছি, হায! কি দুশ্চিন্তা! কি ভয়| আমি অন্তরে ব্যথিত| আমার হৃদয় ধুক্ ধুক্ করছে| না, আমি আর চুপ করে থাকতে পারছি না| কারণ আমি শএু পক্ষের শিঙা শুনেছি| ঐ শিঙা ধ্বনি যুদ্ধের আহবান জানাচ্ছে| 20 বিপর্য়য বিপর্য়যকে অনুসরণ করে| এই পুরো দেশটাই ধ্বংস হয়ে গেছে| হঠাত্ই আমার তাঁবু ধ্বংস হয়ে গেল| আমার পর্দাগুলো ছিঁড়ে গেছে| 21 প্রভু, আর কতদিন এই যুদ্ধের পতাকা আমাকে দেখতে হবে? কতদিন আমি আর এই যুদ্ধের দামামা শুনব? 22 ঈশ্বর বললেন, “আমার লোকরা হল মূর্খ| তারা আমাকে জানে না| তারা হল নির্বোধ বালক| তারা বুঝতে পারছে না| তাদের বিবেচনা শক্তি নেই| তারা শযতানিতে পটু কিন্তু তারা জানে না কি করে ভাল কিছু করতে হয়|” 23 আমি পৃথিবীর দিকে তাকালাম| কিন্তু দেখলাম পৃথিবী শূন্য| পৃথিবীতে কিছুই ছিল না| আমি আকাশের দিকে তাকালাম| দেখলাম সমস্ত আলো নিভে গিয়েছে| 24 আমি পর্বতের দিকে তাকালাম| দেখলাম পর্বত কাঁপছে| সমস্ত পাহাড়গুলি ভয়ে কাঁপছে| 25 আমি দেখলাম কিন্তু কোন মানুষ খুঁজে পেলাম না| আকাশের সমস্ত পাখি মূহুর্তে উধাও হয়ে গিয়েছে| 26 আমি ভালো দেশের দিকে তাকালাম এবং দেখলাম তা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে| ঐ দেশে সমস্ত শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল| প্রভুর ভয়ঙ্কর রোধই এই দশা| 27 প্রভু এইগুলি বললেন: “এই পুরো দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাবে| কিন্তু আমি সম্পূর্ণভাবে তা ধ্বংস করব না| 28 জীবিত লোকরা আর্তনাদ করে মৃত লোকেদের জন্য কাঁদবে| আকাশ এমশঃ কালো হয়ে উঠবে| আমি যা বলব তার নড়চড় হবে না| আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলাবো না|” 29 যিহূদার লোকরা শুনতে পাবে অশ্বারোহী ও তীরন্দাজ সৈন্যবাহিনীর হুঙ্কার এবং ভয়ে তারা দৌড়ে পালাবে| কেউ লুকোবে গুহার ভেতরে, কেউ ঝোপঝাড়ে, কেউ বা পাথরের আড়ালে| যিহূদার সমস্ত শহরগুলি জনমানবহীন হয়ে যাবে| সেখানে কেউ বাঁচবে না| 30 যিহূদা তুমি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছ| তাহলে, এখন তুমি কি করছ? ঐ সমস্ত প্রেমিকদের জন্য তুমি তোমার সব চেয়ে ভালো পোশাক পরেছো, নিজেকে অলঙ্কারে সাজিযেছো, চোখে দিয়েছ কাজল, সুন্দর দেখাবার জন্য নিজেকে সাজিযেছো| কিন্তু তাতে কোন লাভ নেই কারণ তোমার প্রেমিকরা এখন তোমাকে ঘৃণা করে| তারাই তোমাকে মারতে চেষ্টা করছে| 31 এক জন মহিলা প্রসব বেদনায় য়েমন করে তেমনি একটি কান্না আমি শুনতে পাচ্ছি| এই কান্না একজন মহিলার তার প্রথম সন্তান প্রসব করবার কান্নার মত| এই মহিলা হল সিয়োন কন্যা| সে হাত জড়ো করে প্রার্থণার ভঙ্গিতে বলছে, “ওঃ, আমি অজ্ঞান হয়ে যাব! ঘাতকরা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে!”
1 প্রভু বললেন, “জেরুশালেমের রাস্তায় হাঁটো| শহরের সার্বজনীন প্রাঙ্গণগুলিতে খুঁজে দেখো| যদি একজনও সত্ ও ভাল মানুষের সন্ধান পাও য়ে অন্তত সত্যের খোঁজ করছে, যদি এরকম এক জনও মানুষ থাকে তাহলে জেরুশালেমকে আমি ক্ষমা করে দেব| 2 লোকে শুধু এই বলে প্রতিশ্রুতি নেয: ‘প্রভুর অস্তিত্ব য়েমন নিশ্চিত তার দিব্য, কিন্তু তারা আসলে তা বলে না|” 3 প্রভু, আমি জানি আপনি চান মানুষ আপনার অনুগত থাকুক| আপনি যিহূদাবাসীকে আঘাত করলেন| কিন্তু তারা কোন বেদনা অনুভব করে নি| আপনি তাদের ধ্বংস করলেন| কিন্তু তা থেকে তারা কোন শিক্ষা নেযনি| তারা ভীষণ একগুঁযে, জেদী| খারাপ কাজ করেছিল বলে তারা কোন রকম দুঃখপ্রকাশ পর্য়ন্ত করে নি| 4 কিন্তু আমি (যিরমিয়) আমাকে মনে মনে বললাম, “তারা এত দরিদ্র এবং নির্বোধ য়ে তারা প্রভুর জীবনযাত্রা শেখে নি| ঈশ্বরের শিক্ষা বিষয়েও তারা কিছু জানে না| 5 সুতরাং আমি যিহূদার নেতৃবৃন্দের কাছে যাব এবং তাদের সঙ্গে কথা বলব| নেতারা নিশ্চয়ই প্রভুর আচার বিধি জানবে| আমি নিশ্চিত য়ে তারা তাদের ঈশ্বরের বিধিসমূহ জানে|” কিন্তু নেতারা সব একত্র হল এবং প্রভুর সেবার কাজ থেকে দূরে সরে গেল| 6 তারা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে| তাই বন থেকে এক সিংহ এসে তাদের আক্রমণ করবে| মরুভূমি থেকে এক নেকড়ে বাঘ এসে সবাইকে মেরে ফেলবে| তাদের শহরের কাছে এক চিতা লুকিয়ে আছে| শহরের বাইরে কেউ বেরলেই তাকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে খাবে| যিহূদার লোকরা বার বার পাপ করার ফলেই এগুলি ঘটবে| প্রভু বার বার সতর্ক করে কোন ফল পান নি| প্রভুর কাছ থেকে তারা বার বারই দূরে থেকেছে| 7 ঈশ্বর বললেন, “হে যিহূদা, আমাকে একটি সঠিক কারণ দেখাও যার জন্য আমি তোমাদের ক্ষমা করব| তোমার ছেলেমেযেরা আমাকে ত্যাগ করে মূর্ত্তির কাছে প্রতিশ্রুতি নিয়েছে| অথচ তোমার সন্তানদের আমি চাহিদা মতো সব কিছুই দিয়েছিলাম| তবু ওরা আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকেনি| ওরা ব্যভিচারিনীদের সঙ্গে অনেক বেশী সময় নষ্ট করেছে| 8 তারা ভালোভাবে খাওয়া-দাওযা করা ঘোড়ার মতো, যারা কামাবেশের জন্য তৈরী| ওরা সেই সমস্ত ঘোড়ার মতো যারা প্রতিবেশীদের স্ত্রীকে ঘরে ডেকে আনে| 9 “তাহলে আমি কি ঐ সব কাজের জন্য যিহূদার লোকদের শাস্তি দেব না?” এই হল প্রভুর বার্তা| “হ্যাঁ, তুমি জানো য়ে দেশ এই ভাবে বেঁচে থাকে তাকে আমার শাস্তি দিতে হবে| আমি তাদের য়োগ্য শাস্তিই দেব| 10 “যাও যিহূদার সমস্ত দ্রাক্ষা গাছ কেটে দাও| (কিন্তু তাদের কখনও পুরোপুরি ধ্বংস কর না|) কেটে দাও দ্রাক্ষা গাছগুলির শাখাপ্রশাখা| কারণ এই শাখাপ্রশাখা প্রভুর নয়| 11 যিহূদা এবং ইস্রায়েলের পরিবারগুলি আমার সঙ্গে প্রতি ভাবেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 12 “ঐ দেশবাসীরা প্রভুর বিরুদ্ধে মিথ্য়ে প্রচার করেছে| তারা বলেছে, প্রভু আমাদের কিছুই করতে পারবে না| আমাদের আক্রমণ করতে আসছে এমন কোন সৈন্য আমরা কখনও দেখব না| কোনদিন অনাহারে মারাও যাব না|’ 13 “ভ্রান্ত ভাব্বাদীরা হল একটি ফাঁকা বাতাস| ঈশ্বরের বাক্য তাদের মধ্যে নেই| তাদেরও কপালে দুর্ভোগ ঘটবে|” 14 প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেছেন: “ওই লোকরা বলেছিল য়ে আমি তাদের শাস্তি দেব না| সুতরাং যিরমিয়, আমি তোমাকে য়ে শাস্তি দেব তা আগুনের মতো হবে| ঐ লোকগুলি হবে কাঠের মতো| সেই আগুন ওদের পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে|” 15 ইস্রায়েলের পরিবার, এই বার্তা হল প্রভুর, “আমি শীঘ্রই তোমাদের আক্রমণ করবার জন্য বহু দূর থেকে একটি প্রাচীন দেশকে নিয়ে আসব| বহু প্রাচীন সেই দেশ| সেই দেশের মানুষের ভাষা তোমরা বুঝতে পারবে না| 16 তাদের তীরের থলিগুলি খোলা কবরের মতো| তারা সবাই বলবান সৈন্য| 17 ঐ সব সৈন্যরা তোমাদের মজুত করা সমস্ত খাদ্য খেযে ফেলবে| ধ্বংস করবে তোমাদের সন্তানদের| তোমাদের মেষ ও রাখাল বালকদের তারা খেযে ফেলবে| দ্রাক্ষা আর ডুমুর ফল খাবে| তারা তোমাদের সমস্ত বিশ্বস্ত দুর্ভেদ্য শহরগুলিকে ধ্বংস করবে|” 18 এই হল প্রভুর বার্তা, “কিন্তু যিহূদা, যখন এই ভয়ঙ্কর দিনগুলো তোমাদের জীবনে আসবে তখন কিন্তু আমি পুরোপুরি তোমাকে ধ্বংস করব না| 19 যিরমিয়, তোমাকে যিহূদার লোকরা জিজ্ঞাসা করবে, ‘কেন প্রভু তোমার ঈশ্বর আমাদের প্রতি এমন খারাপ ব্যবহার করলেন?’ তখন তুমি (যিরমিয়) তাদের উত্তর দেবে: ‘তোমরা প্রভুর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ, তোমাদের দেশে বিদেশী মূর্ত্তিসমূহ বানিয়েছ এবং তাদের সেবা করেছ| সুতরাং তোমরা এখন বিদেশে বিদেশীদের সেবা করবে|”‘ 20 প্রভু বলেছেন, “এই বার্তা জানিয়ে দাও যিহূদা এবং যাকোবের পরিবারগোষ্ঠীকে: 21 এই হল বার্তা: ‘হে নির্বোধ মানুষ তোমাদের কোন বুদ্ধি নেই| তোমাদের চোখ আছে অথচ দেখতে পাও না! কান আছে কিন্তু শুনতে পাও না|’ 22 নিশ্চয়ই তোমরা আমাকে ভয় পাও|”‘ এই ছিল প্রভুর বার্তা| “আমার সামনে তোমাদের ভয়ে শিউরে উঠতে হবে| আমিই সেই একজন য়ে তটভূমি দিয়ে সমুদ্রকে সীমাযিত করেছে, যাতে জল তার বাইরে না বইতে পারে| জলের ঢেউ হয়তো বালুতটে আছড়ে পড়বে| কিন্তু কোন কিছুকে ধ্বংস করতে পারবে না| ঢেউ গর্জন করে বালুতটে আছড়ে পড়তে পারে| কিন্তু কখনও বালুতটের সীমানা পেরোতে পারবে না| 23 কিন্তু যিহূদার লোকরা ভীষণ একগুঁযে এবং জেদী| তারা সর্বদা আমার বিরুদ্ধে যাবার ছক কষে গিয়েছিল এবং অবশেষে আমাকে ছেড়েও গিয়েছিল| 24 যিহূদার লোকরা কখনও বলেনি, ‘প্রভু আমাদের ঈশ্বরকে ভয় পাওয়া এবং সম্মান জানানো উচিত্| তিনিই আমাদের শরত্ এবং বসন্তকালে সঠিক সময় বৃষ্টি এনে দিয়েছেন| তিনিই আমাদের ফসল তোলার সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন|’ 25 যিহূদার লোকরা, তোমরা অনেক ভুল কাজ করেছ| তাই সময় মতো বৃষ্টির দেখা পাচ্ছো না| তোমরা যথেষ্ট ফসল ফলাওনি| তোমাদের পাপসমূহ প্রভুর কাছ থেকে ভালো জিনিষ পাওয়া থেকে তোমাদের বিরত করেছে| 26 আমার দেশবাসীর মধ্যে কিছু শযতান লুকিয়ে আছে| যারা পাখী ধরবার জন্য খাঁচা তৈরী করে, তারা তাদের মত| পাখী ধরবার পরিবর্তে তারা মানুষ ধরবার ফাঁদ পাতে| 27 এই সব দুষ্ট লোকদের, যারা মিথ্যায ভরা, তাদের বাড়ীগুলো হল পাখীতে ভরা খাঁচাসমূহের মতো| তাদের মিথ্যাগুলি তাদের ধনী ও শক্তিশালী করেছে| 28 তারা তাদের অসত্ কর্ম দিয়ে মোটা এবং স্বাস্থ্য়বান হয়ে উঠেছে| অশুভ উপায়ে তারা হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য়বান| তাদের শযতানির কোন শেষ নেই| তারা অনাথ শিশুদের ব্যাপারে কোন মিনতি করে নি| তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় নি| তারা গরীব লোকদের প্রতি কখনও সুবিচার করেনি| 29 ঐসব কাজের জন্য আমি কি যিহূদার লোকদের শাস্তি দেব না?” এই ছিল প্রভুর বার্তা| “তুমি জানো এই ধরণের দেশগুলোকে আমি উচিত্ শাস্তি দিয়ে থাকি| আমাকে তাদের য়োগ্য শাস্তিই দিতে হবে|” 30 প্রভু বললেন, “যিহূদা দেশে একটা সাংঘাতিক এবং রোমাঞ্চকর ঘটনা ঘটে গিয়েছে| 31 ভাব্বাদীরা মিথ্য়ে কথা বলে এবং যাজকদের যা করার কথা তা তারা করে না| আমার লোকরা, ভাব্বাদীরা এবং যাজকরা যা করে তাই ভালোবাসে| কিন্তু হে আমার লোকসমূহ, তোমাদের যখন শাস্তি পাবার সময় আসবে তখন তোমরা কি করবে?”
1 বিন্যামীনের লোক, প্রাণে বাঁচতে চাইলে জেরুশালেম শহর ছেড়ে চলে যাও| তকোয শহরে যুদ্ধের দামামা বাজিযে দাও| সতর্কতা সূচক পতাকা ওড়াও বৈত্-হক্কেরম শহরে| কারণ উত্তর দিক থেকে অমঙ্গল ও ধ্বংস আসছে| ভয়ঙ্কর এক ধ্বংসলীলা তোমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে| 2 সিয়োন কুমারী, তুমি হলে সুন্দরী এবং কোমলা| 3 মেষপালকরা তাদের মেষপাল নিয়ে জেরুশালেমে এলো| তারা সেই তৃণভূমির চারিদিকে তাঁবু গাড়লো| প্রত্যেক মেষপালক তার নিজের মেষপালকে দেখাশোনা করবে| 4 “জেরুশালেমকে আক্রমণ করার জন্য তৈরী হও| উঠে পড়ো| আজ দুপুরেই আমরা এই শহরকে আক্রমণ করবো| কিন্তু ইতিমধ্যেই খানিকটা দেরি হয়ে গিয়েছে| সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে| 5 সুতরাং আজ রাতেই এই শহরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে প্রস্তুত হও! জেরুশালেমের দুর্ভেদ্য প্রাচীর ভেঙ্গে গুঁড়িযে দাও|” 6 প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন: “জেরুশালেমের চারপাশের সমস্ত গাছ কেটে ফেলো| পাথর আর মাটি দিয়ে এমন স্তূপ তৈরী করো যার সাহায্যে এ শহরের প্রাচীর অতি সহজেই অতিএম করতে পারবে| এই শহরে শোষণ ছাড়া আর কিছু নেই| তাই এই শহরকে শাস্তি পেতে হবে| 7 একটি কুযো য়েমভাবে জলকে তাজা রাখে, ঠিক তেমন ভাবেই জেরুশালেম তার পাপপূর্ণ কর্মগুলিকে তাজা করে রেখেছে| আমি এই শহরের লুঠতরাজ ও হিংসার ঘটনার কথা সব সময় শুনে এসেছি| এদের যন্ত্রণা আর অসুস্থতা দেখেছি| 8 জেরুশালেম এবার সতর্ক হও| যদি তোমরা এখনও সাবধান না হও তাহলে আমি তোমাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব| তোমাদের দেশকে মরুভূমিতে পরিণত করব| কোন মানুষই আর ওখানে বাস করতে পারবে না|” 9 সর্বশক্তিমান প্রভু আরও বললেন: “য়ে সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা এখনও তাদের দেশে পড়ে আছে তাদের একত্রিত করো| য়ে ভাবে তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেতের শেষ দ্রাক্ষাগুলিকে এক একটি করে তুলে নিয়ে একত্রিত করো ঠিক সে ভাবে তাদের একত্রিত করো| য়েমন ভাবে দ্রাক্ষা চযন করবার সময় এক জন শ্রমিক প্রতিটি দ্রাক্ষালতা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে দেখে ঠিক সে ভাবে ইস্রায়েলীয়দের খুঁজে বের করো|” 10 আমি কাদের সঙ্গে কথা বলব? আমি কাদের সতর্ক করব? কারাই বা আমার কথা শুনবে? ইস্রায়েলীয়রা আমার সতর্কবাণী শুনতে পাচ্ছে না কারণ তাদের কান বন্ধ| তারা প্রভুর কথা শুনতে অনিচ্ছুক| তারা তাঁর বার্তা শুনতে পছন্দ করে না| 11 কিন্তু আমি (যিরমিয়) প্রভুর রোধ বহন করতে করতে ক্লান্ত| “য়ে সমস্ত শিশুরা রাস্তায় খেলা করছে তাদের ওপর বর্ষিত হোক প্রভুর এই রোধ| যুবকদের সমাবেশের ওপরেও বর্ষিত হোক এই এোধ| একটি লোক ও তার স্ত্রী, দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হবে| সমস্ত প্রাচীন লোকদের গ্রেপ্তার করা হবে| 12 তাদের ঘর-বাড়ি, জমি-জমা এমন কি তাদের স্ত্রীদের পর্য়ন্ত বিলিযে দেওয়া হোক অন্য লোকদের কাছে| আমি আমার হাত তুলে নেব এবং যিহূদার লোকদের শাস্তি দেব|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 13 “ইস্রায়েলের সমস্ত লোক অবৈধ উপায়ে আরো বেশী বেশী পয়সা চায়| সব চেয়ে নিথথেকে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, তারা সবাই ঐরকম লোভী| ভাব্বাদী থেকে যাজক প্রত্যেকে শুধু মিথ্যাচার করে গিয়েছে| 14 আমার লোকেরা কঠিন আঘাত পেয়েছে| ভাব্বাদী এবং যাজকদের উচিত্ ছিল তাদের সেই আঘাতের ক্ষতে মলম লাগিয়ে দেওয়া| কিন্তু তারা এই ক্ষতকে কোন গুরুত্ব দেয়নি| তারা এই ক্ষতটিকে একটি ছোট আচঁড় বলে গণ্য করেছে| ভাব্বাদীরা এবং যাজকরা বলে: ‘সব কিছু ঠিক আছে|’ কিন্তু প্রকৃত পক্ষে, সব ঠিক নেই| 15 যাজক এবং ভাব্বাদীদের তাদের কৃতকার্য়ের জন্য লজ্জিত হওয়া উচিত্| কিন্তু তারা বিন্দুমাত্র লজ্জিত নয়| তারা জানে না পাপের জন্য তাদের কতখানি বিব্রত হওয়া উচিত্| তাই তারা অন্যদের সাথে একই শাস্তি পাবে| যখন অন্যদের শাস্তি দেব, তখন তাদেরও মাটিতে আছড়ে ফেলা হবে|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 16 পাশাপাশি প্রভু জানালেন: “রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে তাকাও| জিজ্ঞাসা করো কোনটা পুরানো রাস্তা আর কোনটা নতুন| সেই রাস্তায় পা বাড়াও য়ে রাস্তা ভাল| ভালো রাস্তায় হাঁটলে নিজের জন্য শান্তি খুঁজে পাবে| কিন্তু তোমরা বলেছিলে, ‘আমরা ভালো রাস্তায় হাঁটব না|’ 17 আমি তোমাদের ওপর নজরদারি করার জন্য এক জনকে বেছে নিয়েছি| আমি তাদের বলেছিলাম, ‘যুদ্ধের দামামা শোন|’ কিন্তু তারা বলেছিল, ‘আমরা শুনব না!’ 18 সুতরাং সমস্ত দেশগুলি শোন, এই দেশগুলির লোকরা তোমরা মন দিয়ে শোন| 19 কান পেতে শোন এই পৃথিবীর মানুষ, আমি যিহূদার লোকদের জন্য ধ্বংস আনতে যাচ্ছি| কেন? কারণ তারা শুধু খারাপ কাজের ছক কষে গিয়েছে এবং তারা আমার বার্তাকে অগ্রাহ্য করেছে| অস্বীকার করেছে আমার বিধিকে|” 20 প্রভু বললেন, “তোমরা আমার কাছে শিবা দেশ থেকে কেন ধুপ নিয়ে আসো? তোমরা কেন একটি দূর দেশ থেকে আমার কাছে মিষ্ট গন্ধী বচ নিয়ে আসো? তোমাদের হোমবলি আমাকে সুখী করে নি| তোমাদের এই উত্সর্গ আমাকে খুশি করতে পারেনি|” 21 তাই প্রভু যা বললেন তা হল এইরকম: “আমি যিহূদার লোকদের সামনে প্রতিবন্ধক প্রস্তর পেতে দেব| তারা পাথর হয়ে নীচে গড়িযে পড়বে| পিতা এবং তার পুত্ররা হোঁচট খেযে পড়বে তাদের ওপর| বন্ধু বান্ধব এবং প্রতিবেশীরা মারা যাবে|” 22 প্রভু যা বললেন তা হল: “উত্তর দিক থেকে সৈন্যদল আসছে| এই বিশাল দেশ উত্তরের বহুদূর থেকে এগিয়ে আসছে| 23 সৈন্যরা বয়ে আনছে তীরধনুক এবং বর্শা| তারা প্রচণ্ড নিষ্ঠুর| প্রবল শক্তিশালী| তারা ঘোড়ায় ছুটে আসছে সমুদ্রের মতো গর্জন করতে করতে| সিয়োন কন্যা, ঐ সেনারা তোমাকেই আক্রমণ করতে আসছে|” 24 আমরা তাদের সম্পর্কিত খবর শুনেছি| অসহায় বোধ করছি| এক জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার শিশুকে জন্ম দেবার সময়ের মত আমরা অসহায় এবং ব্যথায কাতর রয়েছি| 25 বাড়ির বাইরে বা রাস্তায় য়েও না| কেন না শএুদের হাতে উদ্ধত তরবারি এবং সব জায়গায় বিপদ অপেক্ষা করছে| 26 আমার লোকরা, শোক পোশাকগুলি পরে নাও| সদ্য একমাত্র সন্তান হারানো জননীর মতো ভগ্ন হৃদয়ে চিত্কার করে কাঁদো, কারণ আমাদের শীঘ্রই ধ্বংসকারীর মুখোমুখি হতে হবে য়ে হঠাত্ আমাদের ওপর এসে পড়বে| 27 “যিরমিয়, আমি (প্রভু) তোমাকে একজন ধাতু পরীক্ষক হিসেবে তৈরী করেছি| তুমি আমার লোকদের পরীক্ষা করে দেখবে| তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে লক্ষ্য রাখবে| তারা ভীষণ জেদী| 28 এবং প্রত্যেকেই আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে| তারা লোকদের সম্বন্ধে বাজে কথা বলে| তারা হল মরচে পড়া লোহার মত এবং কলঙ্কিত পিতলের মতো| 29 তারা হল আগুনের মাধ্যমে রূপাকে খাঁটি করবার চেষ্টায রত শ্রমিকদের মত| হাপর খুব জোরে বাতাস সৃষ্টি করল, তাপ বৃদ্ধি পেল, কিন্তু আগুন থেকে কেবল সিসে বেরিয়ে এলো| সমস্ত কাজটাই হল একটা পণ্ডশ্রম| একই রকম ভাবে, আমার লোকদের কাছ থেকে শযতানি সরানো হল না| 30 এদের ‘বাতিল রূপো’ বলে অভিহিত করা হবে| কারণ প্রভু এদের গ্রহণ করেন নি|”
1 এ হল যিরমিয়র প্রতি প্রভুর বার্তা: 2 যাও যিরমিয়, প্রভুর গৃহের দরজায দাঁড়িয়ে এই ধর্মোপদেশ দাও:“যিহূদার লোকরা, এই সেই প্রভুর বার্তা| তোমরা সবাই যারা এই ফটকগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রভুকে উপাসনা করতে আসো, তারা এই বার্তা শোন| 3 ইস্রায়েলের লোকদের কাছে প্রভুই হলেন ঈশ্বর| প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: ‘তোমরা তোমাদের জীবনযাত্রা বদলে ফেল| সত্ কাজ করো| যদি তোমরা তা করো তাহলে তোমাদের আমি এখানে বাস করতে দেব| 4 মিথ্য়েবাদীদের বিশ্বাস কর না| তারা বলে, “এই হল প্রভুর মন্দির স্থান|” 5 তোমরা যদি সত্যিই তোমাদের জীবন ধারা বদলাও এবং ভালো কর্মসমূহ কর এবং তোমরা যদি পরস্পরের প্রতি সত্ ও পক্ষপাতহীন থাকো, আমি তোমাদের এখানে থাকতে দেব| 6 বিদেশী ব্যক্তিদের প্রতিও সত্ থেকো| বিধ্বা এবং অনাথ শিশুদের উপকার করো| তাদের প্রতি সুবিচার করো| নিরীহ মানুষদের হত্যা করো না| আর অন্য কোন দেবতাদের অনুসরণ কোরো না| কারণ তারা তোমাদের জীবন ধ্বংস করে দেবে| 7 যদি তোমরা আমাকে মেনে চলো তাহলে আমি তোমাদের এখানে বাস করতে দেব| আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের চিরকাল বসবাসের জন্য এই জমি দিয়েছিলাম| 8 “‘কিন্তু তোমরা মূল্যহীন মিথ্যায তোমাদের আস্থা স্থাপন করো| 9 তোমরা কি খুনী অথবা চোর হতে চাও? তোমরা কি ব্যভিচারের পাপ গায়ে মাখতে চাও? তোমরা কি মিথ্য়ে অভিয়োগে অন্যদের ফাঁসাতে চাও? তোমরা কি বালের মূর্ত্তি এবং অন্য দেবতাদের যাদের তোমরা জানো না তাদের পূজা করতে চাও? 10 তোমরা যদি এ সব পাপগুলো করো, তাহলে কি তোমরা এই গৃহের ভেতর, য়েটি আমার নামে অভিহিত সেখানে আসতে পারবে এবং আমার সামনে এসে দাঁড়াতে পারবে? তোমরা কি মনে করো আমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমরা বলবে, “আমরা সুরক্ষিত|” তাই আমরা এই ধরণের ভয়ঙ্কর কাজ করব?” 11 আরাধনার এই জায়গাটি আমার নামে নামাঙ্কিত| এই মন্দির কি তোমাদের কাছে ডাকাতদের গোপন ড়েবা ছাড়া আর বেশী কিছু নয়? আমি তোমাদের লক্ষ্য করে যাচ্ছি|”‘ এই ছিল প্রভুর বার্তা| 12 “যিহূদার লোকরা, তোমরা এখন শীলো শহরে চলে যাও| সেই স্থানে যাও যেখানে আমি আমার প্রথম নামাঙ্কিত বাড়িটি তৈরী করেছিলাম| যাও, গিয়ে দেখে এসো, আমার লোকদের, ইস্রায়েলের লোকদের মন্দ কাজের জন্য আমি ঐ জায়গার কি অবস্থা করেছি| 13 এবং আমি এগুলো করব কারণ তোমরা এগুলো সব করছিলে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমি তোমাদের সঙ্গে বারে বারে কথা বলেছি| কিন্তু তোমরা আমার কথা শুনতে চাও নি| আমি তোমাদের ডেকেছিলাম কিন্তু তোমরা কোন উত্তর দাও নি| 14 তাই জেরুশালেমে অবস্থিত আমার নামাঙ্কিত গৃহ আমি নিজেই ধ্বংস করে দেব, ঠিক শীলো শহরের উপাসনালযের ক্ষেত্রে য়েমন আমি করেছিলাম| জেরুশালেমের সেই মন্দিরকে, য়েটি আমার নামে অভিহিত, সেটিকে তোমরা বিশ্বাস কর| আমি সেই জায়গা তোমাদের এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম| 15 ইফ্রযিম থেকে তোমাদের সব ভাইদের য়েমন ছুঁড়ে ফেলেছিলাম তেমনি তোমাদেরও আমার কাছ থেকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেব|’ 16 “যিরমিয়, কখনও তুমি যিহূদার লোকের হয়ে প্রার্থনা করবে না| ওদের সাহায্যের জন্য আমার কাছে প্রার্থনা করো না| আমি তাহলে ইচ্ছে করে তোমার সেই প্রার্থনা শুনব না| 17 আমি জানি তুমি লক্ষ্য রাখছো যিহূদার শহরগুলিতে এবং জেরুশালেমের রাস্তায় তারা কি করে| 18 যিহূদার লোকরা যা করেছে তা হল এই রকম: ছেলেমেযেরা কাঠ জড়ো করছে| আর পিতারা সেই কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালাচ্ছে| মহিলারা মযদা মাখছে, পিঠা, রুটি বানাচ্ছে স্বর্গের রানীকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য| যিহূদার এইসব মানুষ অন্য মূর্ত্তিদের পূজার জন্য পেয নৈবেদ্য ঢালছে| তারা এগুলি করছে আমাকে রুদ্ধ করার জন্য| 19 কিন্তু আমি সত্যিই সে জন নই যাকে যিহূদার লোকরা দুঃখ দিচ্ছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তারা প্রকৃতপক্ষে নিজেদেরই আঘাত করছে এবং নিজেদের লজ্জায ফেলছে|” 20 তাই প্রভু বললেন, “আমি আমার রোধ এই জায়গার বিরুদ্ধে দেখাবো| এখানকার প্রত্যেক মানুষ এবং পশুকে শাস্তি দেব| শাস্তি দেব গাছ এবং ক্ষেতের শস্যকে| আমার রোধ হবে তপ্ত আগুনের মতো, যা নেভাবার ক্ষমতা কারো নেই|” 21 ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “যাও তোমরা যতখুশী চাও হোমবলি উত্সর্গ কর| যত খুশী ঐ উত্সর্গগুলোর মাংস খাও| 22 আমিই মিশর থেকে তোমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিলাম| আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম| কিন্তু তাদের হোমবলি বা উত্সর্গের আদেশ দিইনি| 23 আমি শুধু তাদের এই আদেশ দিয়েছিলাম য়ে, ‘আমাকে মান্য করো এবং আমিই তোমাদের ঈশ্বর হব এবং তোমরা হবে আমার লোক| আমার আদেশ পালন করো এবং তোমাদের ভালো হবে|’ 24 “কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি| তারা আমার প্রতি একেবারেই মনোয়োগ দেয়নি| তারা ছিল একঁগুযে, জেদী| সুতরাং তারা যা খুশী তাই করেছিল| তারা কখনই ভাল হয়নি| তারা আরও শযতান হয়ে সামনের দিকে না হেঁটে পিছনের দিকে হেঁটেছিল| 25 তোমাদের পূর্বপুরুষরা মিশর ছেড়ে যাবার দিন থেকে এখন পর্য়ন্ত আমি তোমাদের কাছে ভৃত্যদের পাঠিয়েছিলাম| আমার ভৃত্যরা হল ভাব্বাদী| আমি তাদের বার বার তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি| 26 কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি| আমার কথায় মনোয়োগ দেবার জন্য তাদের কান পাতেনি| জেদের বশে তারা তাদের পিতাদের চেয়েও আরও বেশী করে অসত্ কাজ করেছে| 27 “যিরমিয়, তুমি যিহূদার লোকদের এই কথাগুলি বলবে| কিন্তু তারা তোমার কথা শুনবে না| তুমি তাদের ডাকলে তারা উত্তর দেবে না| 28 সুতরাং তোমাকে বলতেই হবে: এই দেশ প্রভু ঈশ্বরের আদেশ মেনে চলেনি| এই জাতির লোকরা ঈশ্বরের শিক্ষামালা শোনেনি| সত্যিকারের শিক্ষা কাকে বলে এরা জানে না| 29 “যিরমিয়, তুমি তোমার চুল কেটে ফেল এবং তা ছুঁড়ে ফেলে দাও| তারপর অনাবৃত পাহাড়ের চূড়ায় ওঠ এবং আর্ত্তনাদ করে কাঁদো| কারণ, প্রভু এই প্রজন্মের লোকদের প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং এদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন| প্রচণ্ড রুদ্ধ হয়ে তিনি তাদের শাস্তি দেবেন| 30 তুমি এগুলো করো কারণ আমি দেখেছি য়ে যিহূদার লোকরা শযতানি কাজ করে চলেছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তারা তাদের মূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করেছে| এবং আমি সেই সব মূর্ত্তিদের ঘৃণা করি| তারা আমার নামাঙ্কিত মন্দিরে এই মূর্ত্তিগুলি প্রতিষ্ঠা করেছে| তারা আমার গৃহ অপবিত্র করেছে| 31 তারা বেনহিন্নোম উপত্যকায় তোফত নামক সুউচ্চ স্থান নির্মাণ করেছে| এই সব জায়গার লোকেরা তাদের নিজেদের ছেলেমেযেদের হত্যা করেছে| তারা তাদের হোমবলি হিসেবে উত্সর্গ করেছে| কিন্তু আমি তাদের এই দুষ্ট কাজ করতে আদেশ দিইনি| আমি এমন একটা জিনিষের কথা কখনও ভাবিইনি| 32 তাই আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি| এমন দিন আসছে য়েদিন লোকে এই জায়গাকে তোফত বা বেনহিন্নোমের উপত্যকা বলে আর ডাকবে না| তারা একে গণহত্যার উপত্যকা বলে ডাকবে| তারা এরকম একটি নামকরণ করবে কারণ তারা তোফতে মৃতদেহ কবর দেবে যতক্ষণ পর্য়ন্ত আর কোন মৃতদেহ কবর দেওয়ার জায়গা না থাকে| 33 মৃতদেহগুলি খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকবে| আর সেই মৃতদেহগুলি ছিঁড়ে খাবে আকাশের শকুন ও বনের পশুরা| ঐ শকুন ও পশুদের তাড়া করার মতো কেউ বেঁচে থাকবে না| 34 আমি জেরুশালেমের রাস্তা থেকে এবং যিহূদার শহরগুলি থেকে সমস্ত সুখ এবং আনন্দ কেড়ে নেব| ঐ জায়গাগুলিতে আর কখনও বর ও কনের গলা শোনা যাবে না| দেশটি মরুভূমিতে পরিণত হবে|”
1 এই হল প্রভুর বার্তা: “সেই সময় যিহূদার রাজা এবং গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারীদের অস্থিসমূহ, যাজকগণ ও ভাব্বাদীগণের অস্থিসমূহ এবং জেরুশালেমের লোকদের অস্থিসমূহ তাদের কবরগুলির থেকে বের করে আনা হবে| 2 তারপর তারা সংগ্রহ করা সমস্ত অস্থি ছড়িয়ে দেবে আকাশভরা সূর্য়, চন্দ্র এবং তারাদের নীচে এই মাটিতে| জেরুশালেমের লোকরা সূর্য়, চন্দ্র, তারাদের ভালোবাসতো| তারা ওদের সেবা করতো, অনুসরণ করতো, উপদেশ চাইতো এবং পূজা করতো| কিন্তু কেউ সেই অস্থি একত্রিত করে পুনরায় সমাধিস্থ করবে না| সুতরাং সেই অস্থিগুলো পশুদের বিষ্ঠার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে| 3 “আমি জোর করে যিহূদার লোকদের ভিটেমাটি ছাড়া করব| তাদের বিদেশের মাটিতে পাঠিয়ে দেব| যুদ্ধে য়ে সমস্ত যিহূদার মানুষ বেঁচে গিয়েছে তারাও মৃত্যু কামনা করবে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 4 যিরমিয় এই কথাগুলি যিহূদার লোকদের বলে দাও: প্রভু এই কথাগুলি বললেন: “যদি কোন মানুষ পড়ে যায়, সে আবার উঠে দাঁড়ায এবং যদি কেউ ভুল পথে যায় সে আবার সঠিক পথে ফিরে আসে| যিহূদার লোকরা ভুল পথে গিয়েছিল| 5 কিন্তু জেরুশালেমের ঐসব লোকরা কেন সেই একই ভুল পথে চলতে লাগল? তারা ফিরে এল না, বরং তারা নিজেদের তৈরী মিথ্য়েকেই বিশ্বাস করল| 6 আমি তাদের কথা মন দিয়ে শুনেছি| কিন্তু তারা সততার সঙ্গে কথা বলে না| তাদের পাপের জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করল না| তারা চিন্তা করল না তারা কতখানি অসত্| তারা চিন্তা না করে কাজ করে| তারা যুদ্ধক্ষেত্রে ছুটে বেড়ানো ঘোড়াদের মত| 7 এমন কি আকাশের পাখীরাও কাজ করবার সঠিক সময়টি জানে| সারস, পায়রা, বেগবান এবং গায়ক পাখীরাও জানে নতুন বাসায কখন উড়ে য়েতে হয়| কিন্তু আমার লোকরা জানেনা প্রভু তাদের কাছ থেকে কি চান| 8 “তোমরা বলে চলেছো, ‘তোমরা প্রভুর শিক্ষায় জ্ঞানী হয়ে উঠেছ!’ কিন্তু তা সত্যি নয়| কারণ শাস্ত্রবিদরা মিথ্যা লিখেছিলেন| 9 ঐ ‘জ্ঞানী ব্যক্তিরা’ প্রভুর শিক্ষামালা মেনে চলতে অস্বীকার করেছে| সুতরাং তারা প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানী ব্যক্তি নয়| সেই ‘জ্ঞানী ব্যক্তিদের’ ফাঁদে ফেলা হয়েছিল| তারা বিহবল এবং লজ্জিত হয়েছে| 10 তাই আমি তাদের স্ত্রীদের অন্য পুরুষদের হাতে তুলে দেব| আমি তাদের জমিসমূহ দান করে দেব অন্য মালিকদের| ক্ষুদ্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ সবাই শুধু বেশী পয়সা চায়| ভাব্বাদী থেকে যাজকদের প্রত্যেকেই মিথ্যা কথা বলে| 11 আমার লোকরা খুব বাজে ভাবে আহত হয়েছে| কিন্তু ভাব্বাদী ও যাজকরা ক্ষতগুলিতে পট্টি বেঁধে দেবার বদলে ওগুলোকে সামান্য আঁচড় বলে গণ্য করেছে| তারা বলে, ‘সব কিছু ঠিকঠাক আছে!’ আসলে কিছুই ঠিক নেই! 12 মন্দ কাজের জন্য তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত্| কিন্তু তারা এতটুকু লজ্জিত নয়| তারা তাদের পাপের ব্যাপারে যথেষ্ট বিব্রত নয়| তাই অন্যদের মতো তারাও শাস্তি পাবে| যখন আমি অন্যদের শাস্তি দেব তখন তাদেরও ছুঁড়ে ফেলব মাটিতে|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 13 “তোমাদের ফসল ঘরে তোলার উত্সব আর পালিত হবে না| আমি তোমাদের সমস্ত ফল ও শস্যসমূহ কেড়ে নেব তাই আর ফসল তোলা হবে না|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| “দ্রাক্ষা-ক্ষেতে কোন দ্রাক্ষা থাকবে না| থাকবে না কোন ডুমুর গাছ| এমন কি গাছের পাতা পর্য়ন্ত শুকিয়ে যাবে| আমি তোমাদের যা দিয়েছিলাম সব কিছু নিয়ে নেব|” 14 “কেন আমরা এখানে বসে আছি? আশ্রয়ের জন্য আমাদের দুর্গবিশিষ্ট শহরগুলিতে যাওয়া যাক| যদি আমাদের প্রভু ঈশ্বর মারতেই চান, তাহলে সেখানে মরাই আমাদের পক্ষে ভাল| আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি| তাই ঈশ্বর আমাদের বিষাক্ত জল পান করতে দিয়েছেন| 15 আমরা শান্তি আশা করেছিলাম কিন্তু কিছুই ভালো হল না| আমরা আশা করেছিলাম তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন| কিন্তু শুধুই বিপর্য়য আসছে| 16 দান পরিবারগোষ্ঠীর দেশ থেকে শএুপক্ষের ঘোড়াদের হ্রেষা ধ্বনি আমরা শুনতে পাচ্ছি| মাটি কেঁপে উঠেছে তাদের পায়ের ক্ষুরের শব্দে| তারা এই দেশের সব কিছু ধ্বংস করতে আসছে| তারা ধ্বংস করতে আসছে এই শহর এবং শহরের লোকেদের| 17 “যিহূদার লোকরা, আমি তোমাদের আক্রমণ করার জন্য বিষধর সাপ পাঠাচ্ছি| যিহূদার এই সাপেদের কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না| সাপরা তোমাদের ছোবল মারবে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 18 ঈশ্বর, আমি ভীষণ দুঃখিত ও পরম বেদনায় আছি| 19 আমার লোকদের কথা শুনুন| এদেশের সর্বত্র মানুষ সাহায্যের জন্য আর্ত চিত্কার করছে| তারা বলছে, “প্রভু কি সিয়োনে এখনও আছেন? সিয়োনের রাজা এখনও কি সেখানে আছেন?” কিন্তু ঈশ্বর বললেন, “যিহূদার লোকরা ভিনদেশের মূর্ত্তির পূজা করে এসেছে| সেটা আমাকে প্রচণ্ড রুদ্ধ করে তুলেছে| কেন তারা এই কাজ করেছিল?” 20 এবং লোকরা বলল, “ফসল কাটার সময় পেরিযে গিয়েছে| গ্রীষ্মও চলে গিয়েছে| তবুও আমরা রক্ষা পেলাম না|” 21 আমার লোকরা কষ্ট পেয়েছে বলে আমিও ব্যথিত| দুঃখে আমার কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে| 22 গিলিয়দে নিশ্চয়ই ডাক্তার এবং ওষুধ আছে| তাহলে আমার লোকদের আঘাত কেন সারে নি?
1 যদি আমার মাথা ভর্তি জল থাকতো, যদি আমার চোখ অশ্রু-জলের ঝর্ণা হতো তাহলে আমি আমার লোকেদের ধ্বংসের জন্য সারা দিনরাত কাঁদতাম| 2 মরুভূমির মাঝে আমার যদি একটা ছোট্ট বাড়ি থাকতো, যেখানে পথিক ক্লান্ত হয়ে রাত কাটায, তাহলে আমি আমার লোকদের ত্যাগ করতে পারতাম| তাদের কাছ থেকে সরে য়েতে পারতাম| কারণ তারা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত নয়, তারা প্রত্যেকে ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করেছে| 3 “জিহবা হল তাদের ধনুকের মতো| আর সেখান থেকে তীরের মতো উড়ে আসে এক রাশি মিথ্য়ে| এই দেশের সত্য নয়, চারিদিকে কেবল মিথ্য়েরই জয়জয়কার| এখানকার লোকরা একটা পাপ থেকে আরেক পাপের পথে হেঁটেছে| তারা আমাকে জানে না|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 4 “প্রতিবেশীদের লক্ষ্য কর! নিজের ভাইকেও বিশ্বাস করো না| কারণ তারা প্রত্যেকে ঠগ, প্রতারক, প্রত্যেক প্রতিবেশীই ওর পিছনে কথা বলে| 5 প্রত্যেকে তার প্রতিবেশীকে মিথ্য়ে বলে| কেউ সত্যি কথা বলে না| যিহূদার লোকরা শুধু মিথ্য়েই বলতে শিখেছে| যতক্ষণ না তারা খুব ক্লান্ত হয়ে ফিরে এলো ততক্ষণ তারা পাপাচার চালিযে গিয়েছিল| 6 মন্দ মন্দকেই অনুসরণ করে এবং মিথ্য়ে অনুসরণ করে মিথ্যাকে| লোকরা আমাকে চিনতে অস্বীকার করেছিল|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 7 সুতরাং প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “খাঁটি ধাতু কি না তা বোঝার জন্য এক জন শ্রমিক আগুনে গালিযে দেখে| য়েহেতু আমার আর অন্য কোন বিকল্প নেই তাই আমি যিহূদার লোকদের এই ভাবেই পরীক্ষা করব| আমার লোকরা পাপ করেছে| 8 তীক্ষ্ণ তীরের ফলার মতো তাদের জিহবা| তা থেকে শুধু মিথ্য়েই উচ্চারিত হয়| প্রত্যেক ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুভাবে কথা বলে, কিন্তু সে গোপনে তাকে আঘাত করবার পরিকল্পনা করে| 9 যিহূদার লোকদের আমি শাস্তি দেবই|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তুমি জানো এই ধরণের লোককে আমার শাস্তি দেওয়া উচিত্| তাদের য়োগ্য শাস্তিই আমি দেব|” 10 আমি (যিরমিয়) পাহাড়দের জন্য আর্ত চিত্কার করে উঠবো| শূন্য জমির জন্য শোকের গান গাইব| কারণ জীবিত সব কিছু সরিয়ে নেওয়া হয়েছে| কোন মানুষ এখন সেখানে হাঁটে না| কোন গবাদি পশুর আওয়াজ সেখানে শোনা যাবে না| পশু এবং পাখীরা দূরে কোথাও চলে গিয়েছে| 11 “আমি (প্রভু) জেরুশালেম শহরকে জঞ্জালের স্তূপে পরিণত করব| এ হবে শেযালদের দেশ| যিহূদার সমস্ত শহরকে আমি ধ্বংস করব যাতে সেখানে কেউ বাস করতে না পারে|” 12 এই জিনিসগুলি বোঝার মতো কোন যথেষ্ট জ্ঞানী ব্যক্তি আছে কি? প্রভুর দ্বারা শিক্ষণপ্রাপ্ত এমন কিছু লোক আছে কি যারা প্রভুর বার্তা ব্যাখ্যা করতে পারবে? কেন সেই দেশটি ধ্বংস হয়ে গেল? কেন তা শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হয়েছিল? সেখানে কোন মানুষ কেন য়েতে পারে না? 13 প্রভু প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়েছেন| প্রভু বলেছেন, “এসবগুলো ঘটেছে কারণ যিহূদার লোকরা আমার শিক্ষামালা অনুসরণ করা ছেড়ে দিয়েছিল| আমি তাদের শিক্ষামালা দিয়েছিলাম| কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিল| তারা আমার শিক্ষামালাকে অনুসরণ করেনি| 14 একগুঁযে, জেদী, যিহূদার লোকরা নিজের মতো করে চলেছিল| তারা বালের মূর্ত্তি অনুসরণ করেছিল| মূর্ত্তিদের অনুসরণ করার শিক্ষা তাদের পিতারাই দিয়েছিল|” 15 তাই প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন: “শীঘ্রই আমি যিহূদার লোকদের তিক্ত খাদ্য খেতে বাধ্য করব| আমি তাদের বিষাক্ত জল পান করতে বাধ্য করব| 16 অন্য সমস্ত দেশে আমি যিহূদার লোকদের ছড়িয়ে দেব| অদ্ভ্ুত দেশগুলিতে তারা বাস করবে| তারা এবং তাদের পিতারা কখনোই ঐ সব দেশের কথা শোনেনি বা জানে না| আমি লোকদের তরবারি হাতে পাঠাবো| তারা যিহূদার সব লোকদের হত্যা করবে|” 17 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন: “এখন এইগুলি নিয়ে ভাবো! অন্ত্য়েষ্টি এযিায কাঁদার জন্য ভাড়াটে মহিলাদের ডাকো (রুদালি)| য়ে মহিলারা ভালো কাঁদতে পারে তাদের পাঠাও| 18 লোকরা বলল, ‘তাড়াতাড়ি সেই মহিলারা আসুক এবং তাদের আমার জন্য কাঁদতে দাও| তাদের কান্না দেখে আমাদেরও চোখ থেকে ঝর্ণা বয়ে যাবে|’ 19 “সিয়োন থেকে চিত্কার করে কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে| ‘আমরা সত্যিই ধ্বংস হয়ে গিয়েছি! আমরা সত্যিই লজ্জিত! আমাদের দেশ ছেড়ে আমাদের চলে য়েতেই হবে| কারণ ঘরবাড়ি সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে গিয়েছে|”‘ 20 যিহূদার মহিলারা এখন প্রভুর বার্তা শোন| শোন প্রভুর মুখ নিঃসৃত শব্দ| প্রভু বলছেন, “তোমরা তোমাদের মেযেদের শেখাও কি করে চিত্কার করে কাঁদতে হয়| প্রত্যেক মহিলাকেই এই শোক সঙ্গীত গাওযা শিখতে হবে| 21 ‘মৃত্যু এসেছে| প্রতিটি ঘরের জানালা দিয়ে মৃত্যু ভেতরে এসেছে| মৃত্যু আমাদের প্রাসাদগুলিতে এসেছে| মৃত্যু এসেছে রাস্তায় খেলতে থাকা আমাদের সন্তানদের কাছে| মৃত্যু এসেছে যুবকদের প্রকাশ্য সমাবেশে|’ 22 “যিরমিয়, এই কথা বল: ‘প্রভু বলেন, গোবরের মতো মৃতদেহগুলি মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে| চাষীদের কাটা শস্যের মতো মাটিতে পড়ে থাকবে মৃতদেহ| কিন্তু কেউ তাদের একত্রিত করবে না|”‘ 23 প্রভু বলেন, “বিজ্ঞ ব্যক্তিদের তাদের জ্ঞানের বড়াই করা উচিত্ নয়| শক্তিশালী ব্যক্তিদের তাদের শক্তির বড়াই করা উচিত্ নয়| ধনী ব্যক্তিদের তাদের ধন নিয়ে বড়াই করা উচিত্ নয়| 24 কিন্তু যদি কেউ বড়াই করতে চায় তাহলে তাদের এগুলির জন্য বড়াই করতে দাও: য়ে সে আমাকে জানতে শিখেছে তা নিয়ে সে বড়াই করুক| তাকে বড়াই করতে দাও য়ে সে বোঝে য়ে আমি প্রভু, আমি দযালু এবং ন্যায়নিষ্ঠ এবং আমিই পৃথিবীতে ভালো কাজ করি| ওগুলিকে আমি ভালোবাসি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 25 এই বার্তাটি প্রভুর কাছ থেকে এসেছে, “সময় আসছে যখন আমি শাস্তি দেব সমস্ত লোকদের যারা শুধুমাত্র শারীরিকভাবে সুন্নত্ করেছে| 26 আমি মিসু যিহূদা, ইদোম, অম্মোন, মোয়াব এই সমস্ত দেশগুলির লোক এবং মরুভূমিতে বাস করা লোকদের কথা বলছি| ঐ সব দেশগুলির লোকরা শরীরে সত্যিকারের সুন্নত্ করেনি| আর ইস্রায়েলের পরিবারবর্গের লোকরা তাদের হৃদয়ের সুন্নত্ করেনি|”
1 ইস্রায়েলীয়রা, প্রভুর কথা শোন! 2 প্রভু যা বলেছেন তা হল:“ভিনদেশীযদের মতো বাস কোরো না| আকাশে বিশেষ চিহ্ন দেখে ভীত হযো না| অন্য দেশের লোকেরা এই চিহ্ন দেখে ভীত| কিন্তু তোমরা এসব দেখে ভয় পেযো না| 3 অন্য দেশের রীতি কোন কিছুর য়োগ্য নয়| কারণ তাদের দেবতা কিছু নয়, শুধু মূর্ত্তি মাত্র| তাদের মূর্ত্তি প্রতিমা ছোট্ট কাঠের তৈরী| শ্রমিকরা জঙ্গলে কাঠ কেটেছিল, তারপর তারা তা এনেছিল এবং তাকে মূর্ত্তিসমূহের রূপ দিয়েছিল| 4 সেই মূর্ত্তিকে সুন্দর করে তোলার জন্য কাঠের মূর্ত্তিতে সোনা রূপো লাগিয়েছে| তারপর সেই মূর্ত্তিরা যাতে পড়ে না যায় তার জন্য তারা হাতুড়ি ও পেরেকের সাহায্যে তাদের মাটিতে আবদ্ধ করেছে| 5 অন্যান্য জাতিসমূহের মূর্ত্তিগুলো তরমুজ ক্ষেতে কাকতাড়ুযার মত| ঐ মূর্ত্তিরা কথা বলতে পারে না| তারা নিজের পায়ে হাঁটতে পারে না| তাই লোকরা তাদের কাঁধে করে বয়ে নিয়ে বেড়ায| সুতরাং ঐ মূর্ত্তিদের ভয় পেও না| তারা তোমাদের য়েমন সাহায্য করতে পারবে না, তেমন কোন ক্ষতিও করতে পারবে না|” 6 প্রভু আপনি মহান! আপনার মতো আর কেউ নেই| আপনার নাম হল মহান এবং শক্তিমান! 7 হে ঈশ্বর, প্রত্যেকের আপনাকে সম্মান জানানো উচিত্| আপনি হলেন সমস্ত দেশের রাজা| আপনি তাদের সম্মান পাওয়ার য়োগ্য| জাতিগুলির মধ্যে অনেক বিজ্ঞ ব্যক্তি আছেন, কিন্তু কেউ আপনার মতো বিজ্ঞ নয়| 8 অন্য দেশের সমস্ত লোকরা হল নির্বোধ| তাদের শিক্ষামালা আসে মূল্যহীন কাঠের মূর্ত্তিসমূহ থেকে| তাদের দেবতারা হল শুধু মাত্র কাঠের মূর্ত্তি| 9 তারা সেই মূর্ত্তি তৈরী করতে তর্শীশের রূপো এবং ঊফসের সোনা ব্যবহার করেছে| ছুতোর মিস্ত্রী এবং স্বর্ণকার শ্রমিকরা তাদের সেই মূর্ত্তিদের তৈরী করেছে| তারা সেই মূর্ত্তিদের বেগুনী ও নীল রঙের পোশাক পরিযেছে| “দক্ষ কারীগররা” ঐ “দেবতাদের” তৈরী করেছে| 10 কিন্তু প্রভুই হলেন সত্যিকারের ঈশ্বর| তিনিই এক মাত্র ঈশ্বর যিনি জীবিত| তিনি হলেন সর্বকালের রাজা| ঈশ্বর রুদ্ধ হলে পৃথিবী কেঁপে ওঠে এবং সেই এোধ থামানোর ক্ষমতা ঐ ভিন্দেশীদের নেই| 11 প্রভু বললেন, “এই বার্তা ঐ লোকদের জানিয়ে দাও| ‘ঐ ভ্রান্ত দেবতা পৃথিবী ও স্বর্গকে তৈরী করেনি| তারা ধ্বংস হবে এবং তাদের স্বর্গ ও মর্ত্য থেকে অদৃশ্য করে ফেলা হবে|”‘ 12 ঈশ্বর হলেন সেই এক জন যিনি এই পৃথিবী তৈরী করতে তাঁর শক্তি ব্যবহার করেছিলেন| ঈশ্বর তাঁর জ্ঞান দিয়ে এই পৃথিবীকে তৈরী করেছেন| তাঁর জ্ঞান ও বোধশক্তি দিয়ে পৃথিবীর ওপরে আকাশের আচ্ছাদন তৈরী করেছেন| 13 ঈশ্বরই উচ্চ বজ্রনির্ঘোষ, বন্যা ও বৃষ্টির কারণ| তিনিই পৃথিবীর সর্বত্র মেঘের সৃষ্টি করেছেন| তিনিই বৃষ্টির সঙ্গে বিদ্য়ুত্ পাঠান| তিনিই হাওযার সৃষ্টি করেন| 14 মানুষ এতো বোকা! নিজের হাতে তৈরী মূর্ত্তিদের কাছেই স্বর্ণকার শ্রমিকরা বোকা বনে গেল| ঐ মূর্ত্তিরা মিথ্য়ে ছাড়া আর কিছু নয়, ওরা বোধ্বুদ্ধিহীন| 15 ঐ মূর্ত্তিরা কোন কিছুর য়োগ্য নয়| ওদের নিয়ে কৌতুক করা যায়| বিচারের সময় ঐ মূর্ত্তিদের ধ্বংস করা হবে| 16 কিন্তু যাকোবের ঈশ্বর ঐ মূর্ত্তিদের মতো নয়| ঈশ্বর সব কিছু সৃষ্টি করেছেন| ইস্রায়েলের পরিবারবর্গকে তিনি তাঁর নিজের লোক বলে নির্বাচন করেছিলেন| ঈশ্বরের নাম হল “প্রভু সর্বশক্তিমান|” 17 তোমাদের যথাসর্বস্ব নিয়ে চলে যাবার জন্য তৈরী হও| যিহূদার লোকরা তোমরা শহরের মধ্যে বন্দী হয়ে আছো এবং তোমাদের চারিদিকে শএুরা ঘিরে রয়েছে| 18 প্রভু বললেন, “এই বার আমি যিহূদার লোকদের এই দেশের বাইরে বের করে দেব| আমি তাদের কাছে যন্ত্রণা ও অশান্তি আনব| তারা যাতে উচিত্ শিক্ষা পায় তার জন্য আমি এগুলি করব|” 19 হায আমি (যিরমিয়) খুব বাজেভাবে আঘাত পেয়েছি| এই আঘাতে আমি আহত এবং সেরে উঠতে পারব না| তবুও আমি নিজেকে বললাম, “এটা আমার অসুখ এবং এর মধ্যে দিয়েই আমাকে কষ্ট পেতে হবে|” 20 আমার তাঁবু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| তাঁবুর সমস্ত দড়ি ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে| আমার সন্তানরা আমায় ত্যাগ করে চলে গিয়েছে| আমার তাঁবু খাটিযে দেবার জন্য কোন লোক নেই| আমাকে স্থায়ী একটা আস্তানা গড়ে দেবার জন্যও কেউ নেই| 21 মেষপালকরা (নেতৃবৃন্দ হল নির্বোধ| তারা প্রভুকে খোঁজার চেষ্টা করেনি| তারা জ্ঞানী নয়, তাই তাদের মেষের পাল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং হারিযে গিয়েছে| 22 শোন! উত্তর দিকে প্রচণ্ড শোরগোল উঠেছে| একটি সৈন্যবাহিনী যিহূদার শহরগুলিকে ধ্বংস করে দেবে| যিহূদা শূন্য এক মরুভূমিতে পরিণত হবে| সেখানে শুধু শেযাল চরে বেড়াবে| 23 প্রভু, আমি জানি য়ে লোকরা সত্যি সত্যি জানে না কি করে তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে হয়| লোকরা সত্যি সত্যি জানে না কি ভাবে সঠিক পথে জীবনযাপন করতে হয়| 24 প্রভু, আমাদের শোধন করুন, কিন্তু ন্যায়নিষ্ঠ হোন| রোধ আমাদের আর শাস্তি দেবেন না! 25 যদি আপনি রুদ্ধ হন তাহলে অন্য দেশগুলিকে শাস্তি দিন| তারা আপনাকে চেনে না| সম্মান করে না| তারা আপনার উপাসনাও করে না| ওই দেশগুলি যাকোবের পরিবারকে ধ্বংস করেছিল| ধ্বংস করেছিল ইস্রায়েলকে| তারা ধ্বংস করেছিল ইস্রায়েলের স্বদেশকে|
1 প্রভুর এই বার্তা যিরমিয়র কাছে এসে পৌঁছালো: 2 “চুক্তির ভাষা শোন যিরমিয়| তুমি যা শুনবে তা যিহূদার লোকেদের বলবে| জেরুশালেম বাসীদেরও বলবে| 3 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এইগুলি বললেন: ‘যারা এই চুক্তি মানবে না তাদের অমঙ্গল হবে|’ 4 তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে আমি য়ে চুক্তি করেছিলাম তার সম্বন্ধে বলছি| মিশর থেকে যখন তাদের আমি নিয়ে এসেছিলাম তখনই এই চুক্তি করেছিলাম| মিশরের প্রচুর সমস্যা ছিল লোহা গলানো গরম ছিল সেখানে| আমি ওদের বলেছিলাম, আমাকে মেনে চলো এবং আমার আদেশমতো কাজ করো| যদি তা করো তাহলে তোমরা হবে আমার লোক| আমি হব তোমাদের ঈশ্বর| 5 “আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম তা বজায় রাখতে এটা করেছিলাম| আমি কথা দিয়েছিলাম য়ে, তাদের এমন উর্বর জমি দেব যা থেকে দুধ আর মধু সংগৃহীত হবে| এবং তোমরা এখন সেই দেশেই বাস করছো|”আমি (যিরমিয়) উত্তরে জানালাম, “আমেন, প্রভু|” 6 প্রভু আমাকে বললেন, “যিরমিয়, এই বার্তা তুমি যিহূদার শহরগুলিতে এবং জেরুশালেমের রাস্তাগুলিতে ধর্মোপদেশ দ্বারা প্রচার করো| এই হল বার্তা: চুক্তির বযান শোন এবং বিধিগুলিকে মান্য করো| 7 আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে নিয়ে আসার সময় সতর্কবাণী দিয়েছিলাম| সেই দিন থেকে আজ পর্য়ন্ত বারে বারে আমি তাদের সতর্ক করে এসেছি| আমি তাদের আমাকে মেনে চলার কথা বলেছিলাম| 8 কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষ আমার কথা শোনেনি| তারা ছিল একঁগুযে, জেদী| তারা তাদের দুষ্ট অন্তরে যা ভাবত তাই করত| চুক্তিতে বলা হয়েছে য়ে যদি তারা ঈশ্বরকে অমান্য করে তাহলে তাদের অমঙ্গল হবে| আমি তাদের আদেশ দিয়েছিলাম এই বন্দোবস্ত মানতে| কিন্তু তারা তা মানেনি| তাই আমি তাদের অমঙ্গল ঘটাবো|” 9 প্রভু আমাকে বললেন, “যিরমিয়, আমি জানি যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকরা গোপন ছক কষেছে| 10 তারা তাদের পূর্বপুরুষদের মতো পাপ কাজ করছে| তাদের পূর্বপুরুষরা আমার বার্তা শুনতে অস্বীকার করেছিল| তারা অন্য দেবতার পূজা করেছিল| আমি তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছিলাম তা যিহূদা ও ইস্রায়েলের পরিবার ভঙ্গ করেছে|” 11 তাই প্রভু বললেন, “আমি খুব শীঘ্রই যিহূদার লোকদের ভয়ঙ্কর অনিষ্ট করব| তারা পালাতে পারবে না| তারা অনুতপ্ত হবে এবং তারা আমার কাছে এসে চিত্কার করে সাহায্য চাইবে| কিন্তু আমি তাদের কথা কানেই তুলব না| 12 যিহূদা ও জেরুশালেম শহরের লোকরা তখন সাহায্যের প্রার্থনায ছুটে যাবে তাদের মূর্ত্তিদের কাছে| ঐ লোকরা মূর্ত্তিদের সামনে ধুপধূনো জ্বালাবে| কিন্তু সেই ভয়ঙ্কর সময় যখন আসবে তখন মূর্ত্তিরা যিহূদার লোকদের কোন সাহায্যই করতে পারবে না| 13 যিহূদার লোকরা, তোমাদের অসংখ্য মূর্ত্তি আছে| যিহূদার যত শহর আছে ততগুলি সংখ্যক মূর্ত্তি আছে| তোমরা ঐ বিরক্তিকর মূর্ত্তি ‘বাল’ এর জন্য বহু বেদী তৈরী করেছিলে| জেরুশালেমে যতগুলি সংখ্যক রাস্তা আছে ততগুলি বেদী তৈরী করেছিলে| 14 “যিরমিয় তোমায় বলেছি যিহূদার লোকদের জন্য প্রার্থনা কোরো না| তাদের জন্য কিছু চেযো না| তাদের জন্য প্রার্থনা করলে আমি শুনব না| ওরা কষ্ট পাবেই| কষ্ট পেলে তখন তারা আমার সাহায্যের জন্য কাঁদবে| কিন্তু আমি তাদের কথা শুনব না| 15 “আমার প্রেমিকা (যিহূদা) আমার উপাসনা গৃহে কেন? তার ওখানে থাকার কোন অধিকার নেই| সে অনেক পাপ কাজ করেছে| যিহূদা তুমি কি মনে কর বিশেষ প্রতিশ্রুতিসমূহ ও পশুবলিসমূহ তোমাকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারবে? তুমি কি মনে কর আমাকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করে তুমি শাস্তির হাত থেকে রেহাই পাবে?” 16 প্রভু তোমাকে একটি নাম দিয়েছিলেন| তিনি তোমাকে ‘মনোরম এক হরিত্পর্ণ জিতবৃক্ষ’ বলে ডাকতেন| কিন্তু এক প্রবল ঝড়ের সাহায্যে প্রভু ঐ গাছে আগুন লাগিয়ে তার শাখাপ্রশাখা পুড়িয়ে ছাই করে দেবেন| 17 প্রভু সর্বশক্তিমান তোমাকে রোপণ করেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন য়ে বিপর্য়য তোমার কাছে আসবে| কারণ ইস্রায়েল ও যিহূদার পরিবার অনেক ক্ষতিকর অনিষ্ট কাজ করেছে| তারা বাল মূর্ত্তির উদ্দেশ্যে বলি দিয়েছে এবং আমাকে রুদ্ধ করেছে|” 18 প্রভু আমাকে দেখালেন অনাথোতের মানুষ কি ভাবে আমার বিরুদ্ধে চএান্ত করেছে| প্রভু আমাকে এইসব দেখালেন, যাতে আমি জানতে পারি য়ে তারা আমার বিরুদ্ধে| 19 আমার বিরুদ্ধে লোকদের এই ষড়য়ন্ত্রের কথা প্রভু আমাকে জানাবার আগে আমি ছিলাম একজন নিরীহ মেষশাবকের মত, জবাই এর অপেক্ষারত| আমি এই ষড়য়ন্ত্রের কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি| তারা আমার সম্বন্ধে এই কথাগুলি বলেছিল: “চলো ঐ গাছকে এবং গাছের ফলকে আমরা ধ্বংস করে দিই| চলো তাকে হত্যা করি| তাহলে মানুষ তাকে ভুলে যাবে|” 20 কিন্তু প্রভু আপনি হলেন নিরপেক্ষ বিচারক| আপনি জানেন কিভাবে মানুষের হৃদয় ও মনের পরীক্ষা নিতে হয়| আমি আপনাকে আমার যুক্তিগুলো সাজিযে দেব এবং আপনিই আমার হয়ে ওদের য়োগ্য শাস্তি দেবেন| 21 অনাথোতের মানুষ যিরমিয়কে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল| তারা যিরমিয়কে বলেছিল, “প্রভুর হয়ে ভাব্বাণী করলে তোমাকে আমরা হত্যা করব|” প্রভু সেই অনাথোতের লোকদের ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নিলেন| 22 প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, “আমি অনাথোতের সেই লোকগুলোকে খুব শীঘ্রই য়োগ্য শাস্তি দেব| তাদের যুবকেরা যুদ্ধে মারা যাবে| তাদের ছেলেমেযেরা খাদ্যের অভাবে মারা যাবে| 23 অনাথোত শহরের কেউ বেঁচে থাকবে না| আমি তাদের শাস্তি দেব| আমিই ওদের অমঙ্গল ঘটাবো|”
1 প্রভু, আমি যদি আপনার সঙ্গে তর্ক করি, তাহলে আপনিই সর্বদা সঠিক, ধর্মময| তবুও আমি আপনার কাছে কয়েকটি ভুল-ভ্রান্তি সম্বন্ধে প্রশ্ন করতে চাই| কেন দুষ্ট লোকরাই সফলতা প্রাপ্ত? কেন বিশ্বাসঘাতকরা শান্তিতে থাকে? 2 আপনিই সেই এক জন যিনি দুষ্ট লোকদের এখানে রেখেছেন| বৃক্ষের মতো, তারা এখন তাদের শিকড় মাটির অনেক গভীরে বিস্তার করেছে| ফুলে ফেঁপে উঠেছে ফলমুল| মুখে তারা বলে বেড়ায আপনি ওদের খুবই কাছের এবং প্রিয| কিন্তু হৃদয়ে ওরা আপনার কাছ থেকে বহুদূরে| 3 কিন্তু প্রভু, আপনি আমার হৃদয় জানেন| আপনি আমাকে দেখেছেন এবং আমার হৃদয় ও মনের পরীক্ষা নিয়েছেন| জবাই করার আগে মেষদের য়েমন টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়, তেমন করেই ঐ পাপী লোকদের তাড়িয়ে নিয়ে যান| জবাইযের দিনে ওদের জবাইযের জন্য বেছে নিন| 4 কতদিন আর এই দেশ শুষ্ক থাকবে? ঐ দুষ্ট লোকদের কারণে এই দেশের পশু এবং পাখীরা মারা গিয়েছে| কিন্তু তবুও দুষ্ট লোকরা বলে, “আমাদের কি দশা হবে তা দেখার জন্য যিরমিয় ততদিন পর্য়ন্ত জীবিত থাকবে না|” 5 “যিরমিয়, তুমি যদি লোকদের সঙ্গে দৌড় প্রতিয়োগিতায ক্লান্ত হয়ে পড়ো, তাহলে কি করে তুমি ঘোড়াদের সঙ্গে প্রতিয়োগিতা করবে? তুমি যদি নিরাপদ স্থানেই হাঁপিযে ওঠো, তাহলে বিপদ সঙ্কুল জায়গায় কি করবে? য়র্দনের নদী তীরে বেড়ে ওঠা কাঁটা ঝোপে পড়লে তুমি কি করবে? 6 তোমার বিরুদ্ধে যারা চএান্ত করেছে তারা হল তোমার নিজের ভাযেরা এবং তোমার নিজের পরিবারের লোকরা| তোমারই পরিবারের লোকরা তোমার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে| ওরা তোমার সঙ্গে বন্ধুর মতো কথা বললেও ওদের বিশ্বাস করো না|” 7 “আমি প্রভু আমার সমস্ত ঘরবাড়ি এবং আমার সমস্ত সম্পত্তিপরিত্যাগ করেছি| আমি যাকে ভালবাসি সেই তাকে (যিহূদা) আমি তার শএুদের তাকে দিয়ে দিয়েছি| 8 হিংস্র সিংহের মতো আমার লোকরা আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে| তারা আমার দিকে তাকিযে গর্জন করেছিল তাই আমি তাদের ছেড়ে চলে গিয়েছি| 9 আমার লোকরা শকুন পরিবৃত মৃত প্রায জন্তুর মতো হয়ে উঠেছে| তাদের ঘিরে পাক খাচ্ছে লোভী শকুনের দল| বন্য জন্তুরা এসো, এসো কিছু খাবার তোমাদের জন্য পড়ে আছে| 10 বহু মেষশাবক (নেতারা) আমার দ্রাক্ষাক্ষেত নষ্ট করে দিয়েছে| তারা আমার ক্ষেতে চারা গাছগুলিকে পায়ে মাড়িয়ে গিয়েছে| তারা আমার সবুজ শস্যে ভরা ক্ষেতকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে| 11 আমার মাঠকে তারা মরুভূমি বানিয়ে ফেলেছে| সবুজ ক্ষেত এখন সম্পূর্ণরূপে শুকনো| সেখানে কেউ বাস করে না| পুরো দেশটাই এখন শুকনো| ঐ দেশকে যত্ন করবার জন্য কেউ সেখানে পড়ে নেই| 12 সৈন্যরা ঐ মরুভূমিতে এসেছিল জিনিষপত্র লুঠ করতে| প্রভু সেই সৈন্যদের ব্যবহার করেছিলেন ঐ দেশকে শাস্তি দেবার জন্য| দেশটির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্য়ন্ত লোকেরা শাস্তি পেয়েছিল| কোন ব্যক্তি নিরাপদ ছিল না| 13 মানুষ গমের চাষ করবে| কিন্তু ফসল কাটার দিনে গাছে শুধু কাঁটাই খুঁজে পাবে| যদি তারা সম্পূর্ণরূপে পরিশ্রান্ত হয়ে যাওয়া পর্য়ন্তও কাজ করে, তবু তারা তাদের কঠিন পরিশ্রমের মূল্য পাবে না| তারা তাদের শস্য দেখে লজ্জিত হবে| প্রভুর রোধই এগুলি ঘটার কারণ|” 14 প্রভু যা বললেন তা হল: “ইস্রায়েলের চারপাশের দেশগুলিতে যারা বাস করে তাদের সঙ্গে আমি কি করব তা আমি তোমাকে বলে দেব| তারা দুষ্ট লোক| আমি ইস্রায়েলের লোকদের য়ে দেশ দিয়েছিলাম তা তারা ধ্বংস করে দিয়েছিল| আমিও ঐ পাপীদের দেশ থেকে ছুঁড়ে বাইরে বের করে দেব| তাদের সঙ্গে যিহূদার লোকদেরও একই অবস্থা করব| 15 দেশ থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পর আমি তাদের জন্য সমব্যথিত হব| আমি প্রত্যেক পরিবারকে তাদের সম্পত্তিতে এবং তাদের দেশে আবার ফিরিয়ে আনব| 16 আমি চাই তারা ভাল করে শিক্ষা নিক| অতীতে তারা আমার লোকেদের বাল মূর্ত্তির নামে প্রতিশ্রুতি নিতে শিখিযেছিল| এখন আমি চাই তারা তাদের নতুন শিক্ষা একই ভাবে পাক| আমি চাই তারা আমার নাম ব্যবহার করতে শিখুক| আমি চাই তারা বলুক, ‘য়েমন প্রভু আছেন|’ যদি ওরা এরকম করে তাহলে ওরা সাফল্য পাবে এবং আমি ওদের আমার লোকদের সঙ্গে থাকতে দেব| 17 কিন্তু যদি ঐ জাতিটি আমার বাণী না শোনে তাহলে আমি তাদের পুরোপুরি ধ্বংস করে দেব| আমি তাদের মৃত গাছের মতো উপড়ে ফেলবো|” এটি হল প্রভুর বার্তা|
1 প্রভু আমাকে যা বলেছেন তা হল: “যিরমিয়, যাও একটি ক্ষৌম কটি বস্ত্র কিনে আনো এবং ওটি তোমার কটিদেশের চারপাশে শক্ত করে জড়াও| ওটিকে ভিজতে দিও না|” 2 সুতরাং আমি একটি কটি বস্ত্র কিনে আনলাম| প্রভুর কথা মতো কোমরে জড়িয়ে নিলাম| 3 দ্বিতীয়বার প্রভুর বার্তা আমার কাছে এলো| 4 এই ছিল বার্তা: “যিরমিয়, কিনে আনা কটিটি পরে তুমি ফরাত্ নদীর কাছে যাও| সেখানে কটিটি একটি পাথরের ফাঁকে লুকিয়ে রাখো|” 5 সুতরাং আমি প্রভুর কথা মতো ফসু নদীর কাছে গিয়ে কটিটি লুকিয়ে রাখলাম| 6 অনেকদিন পরে প্রভু আমাকে বললেন, “যিরমিয়, এখন তুমি আবার ফরাত্ নদীর কাছে গিয়ে লুকোনো কটিটি নিয়ে এসো|” 7 তখন আমি আবার ফরাতের কাছে গিয়ে পাথরের ফাঁক থেকে কটিটি বের করার পর দেখলাম য়ে ওটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে| আর কোন মতেই ওটা পরার মতো অবস্থায় নেই| 8 তখন আবার প্রভুর বার্তা আমার কাছে এলো| 9 প্রভু যা বলেছিলেন, “য়েমন ঐ কটিটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে ঠিক তেমনি আমি যিহূদা এবং জেরুশালেমের অহঙ্কারী মানুষদের ধ্বংস করে দেব| তাদের দর্প চূর্ণ করব| 10 আমি যিহূদার সমস্ত দুষ্ট ও অহঙ্কারী লোকদের ধ্বংস করে দেব| তারা আমার বার্তাসমূহ শুনতে অস্বীকার করেছিল| তারা একগুঁযে, জেদী| তারা নিজের মতো করে চলেছে| তারা অন্য দেবতাদের পূজা করেছে| যিহূদার লোকদের অবস্থা হবে ঐ কটির মতো| তারা ধ্বংস হবেই| 11 এক জন ব্যক্তি য়েমন করে কোমরে কটি বস্ত্র জড়ায ঠিক তেমন করে আমি ইস্রায়েল এবং যিহূদার সমস্ত লোককে আমার কোমরের চারপাশে জড়িয়ে নিলাম| এটি হল প্রভুর বার্তা| “আমি ঐ সব মানুষদের নিজের লোকে পরিণত করার জন্যই এটা করেছিলাম| ওরা আমার নিজস্ব লোকে পরিণত হলে আমি মান সম্মান খ্যাতি সব কিছু পেতাম| কিন্তু ওরা আমার কথা শুনল না|” 12 “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের বলো: ‘প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বললেন তা হল: চামড়ার তৈরী প্রত্যেকটি দ্রাক্ষারস রাখার থলি দ্রাক্ষারসে ভরে থাকা উচিত্|’ ওরা তোমাকে মৃদু হেসে বলবে, ‘আমরা কি জানি না য়ে প্রতিটি চামড়ার তৈরী দ্রাক্ষারস রাখার থলি দ্রাক্ষারসে পূর্ণ থাকা উচিত্|’ 13 তখন তুমি তাদের বলবে, ‘প্রভু যা বলেছেন তা হল: আমি এই দেশের সমস্ত লোককে অর্থাত্ দাযূদের সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজাদের, যাজকদের, ভাব্বাদীদের এবং জেরুশালেমের সমস্ত লোকদের মত্ততায পূর্ণ করব| 14 যিহূদার লোকরা আমার কারণে হোঁচট খাবে এবং পরস্পরের ঘাড়ে পড়বে| পিতাপুত্র মিলেও পা জড়াজড়ি করবে আর হোঁচট খেযে আছড়ে পড়বে|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| “‘আমার সমবেদনাকে আমি যিহূদার লোকদের ধ্বংস করা থেকে বিরত করতে দেব না| যিহূদার লোকদের ধ্বংস করার ক্ষেত্রে আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত হব না|”‘ 15 মনোয়োগ দিয়ে শোন| প্রভু তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন| তোমরা গর্ব করো না| 16 তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে সম্মান করো| তাঁর প্রশংসা করো| না হলে তিনি অন্ধকার বয়ে আনবেন| যেখানে তোমরা আলোর জন্য অপেক্ষা করছ এবং আশা করছ, সেই অন্ধকার পাহাড়গুলিতে হোঁচট খাবার আগে এবং পড়বার আগে প্রভুর প্রশংসা কর, নাহলে তিনি সেটাকে ভযাবহ অন্ধকারে পরিণত করবেন| তিনি আলোটিকে গাঢ় অন্ধকারে পরিবর্তিত করবেন| 17 যদি তোমরা প্রভুর কথা না শোন, তোমাদের অহঙ্কার আমাকে ভীষণ দুঃখ দেবে| আমি মুখ লুকিয়ে চিত্কার করে কাঁদব| আমার চোখ দিয়ে অঝোরে অশ্রু-ধারা বইতে থাকবে| কারণ প্রভুর পালকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে| 18 রাজা এবং তাঁর স্ত্রীকে বলো, “সিংহাসন থেকে নেমে এসো| তোমাদের চোখ ধাঁধানো রাজমুকুট মাথা থেকে খসে পড়ছে|” 19 নেগেভের মরু শহরগুলিতে তালা লাগানো হয়েছে এবং কোন ব্যক্তি তা খুলতে পারবে না| যিহূদার সমস্ত মানুষকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে| তাদের জেলের কয়েদীদের মতো বয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে| 20 জেরুশালেম দেখ! উত্তর দিক থেকে শএুরা আসছে| তোমার মেষের পালকোথায়? ঈশ্বর তোমাদের ঐ চমত্কার মেষের পালটি দিয়েছিলেন| তোমাদের ওটার দেখাশোনা করবার কথা ছিল| 21 প্রভু যখন তোমার কাছে তোমার মেষের পালের হিসেব দিতে বলবেন, তখন তুমি কি বলবে? কথা ছিল তুমি তোমার লোকদের ঈশ্বর সম্বন্ধে শিক্ষা দেবে| তোমার নেতাদের তাদের নেতৃত্ব দেবার কথা ছিল| কিন্তু তারা তাদের কাজ করেনি| তাই তোমাকে বেশী দুঃখ যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে| সে যন্ত্রণা হবে একজন মহিলার প্রসব যন্ত্রণার মতো| 22 তুমি হয়তো নিজেকে জিজ্ঞেস করবে, “আমার ক্ষেত্রে এইসব খারাপ ব্যাপারগুলো কেন ঘটল?” তোমার অনেক পাপের জন্য ঐ সব ঘটেছে| তোমার পোশাক ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং তোমার জুতোকেই নিয়ে চলে গেছে| তারা তোমাকে বিব্রত, বিরক্ত করার জন্যই ওগুলো করেছে| 23 এক জন কালো চামড়ার মানুষ কখনও তার গায়ের রক্ত পালটাতে পারে না| এবং চিতাও তার গায়ের দাগ পালটাতে পারে না| সেই রকম ভাবে জেরুশালেম তুমি কোনদিন পালটাবে না এবং ভাল কাজ করতে পারবে না| তুমি সর্বদাই খারাপ কাজ করবে| 24 “আমি তোমাকে জোর করে ঘর ছাড়া করবো| তুমি দিকবিদিক ছোটাছুটি করবে| তুমি ভূষির মতো মরু ঝড়ে উড়ে যাবে| 25 এসবই তোমাদের ভাগ্য়ে ঘটবে| তোমাদের ব্যাপারে আমার এটাই পরিকল্পনা|” এই হল প্রভুর বার্তা| “কেন এটা ঘটবে? কারণ তুমি আমায় ভুলে গিয়েছিলে| তুমি মূর্ত্তিদের বিশ্বাস করেছিলে| 26 জেরুশালেম আমি তোমাকে উলঙ্গ করে ছাড়ব| সবাই তোমাকে দেখবে| তুমি লজ্জিত হবে| 27 তোমার ভযাবহ কাজ আমি দেখেছি| আমি তোমাকে একজন ব্যাভিচারিণীর মত হাসিমুখে তোমার প্রেমিকদের সঙ্গে য়ৌনসহবাস করতে দেখেছি| আমি তোমাকে মাঠে-ঘাটে এবং পাহাড় চূড়ায় বেশ্যার মত ব্যবহার করতে দেখেছি| জেরুশালেম! এর জন্য তোমার জীবনে চরম দুর্দিন ঘনিয়ে আসবে| আমি অবাক হয়ে ভাবছি আর কতদিন তুমি এইসব নোংরা পাপ কাজ করে যাবে|”
1 খরা সম্বন্ধে যিরমিয়র প্রতি প্রভুর বার্তা: 2 “যিহূদার লোকরা মৃত ব্যক্তিদের জন্য চিত্কার করে কাঁদবে| যিহূদার শহরগুলিতে লোকরা আরো বেশী দুর্বল হয়ে পড়বে| তারা মাটিতে শুয়ে পড়ে থাকবে| জেরুশালেমবাসী ঈশ্বরের কাছে চিত্কার করে সাহায্য প্রার্থনা করবে| 3 নেতারা তাদের পরিচারকদের জল আনতে পাঠাবে| জলাধারে পরিচারকরা এসে জল দেখতে পাবে না| শূন্য পাত্র নিয়ে ফিরে যাবে, তারা লজ্জায মাথা ঢাকবে| 4 চাষীরা চরম বেদনা পাবে ও লজ্জিত হবে| কেউ ফসল বোনার জন্য মাটি কর্ষন করে নি| এক ফোঁটা বৃষ্টির দেখা নেই তাই লজ্জায তারা মাথা ঢাকবে| 5 তৃণের অভাবে হরিণী তার সদ্যজাত সন্তানকে একাকী মাঠেই রেখে চলে যাবে| 6 বন্য গাধারা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে শেযালের মতো ঘ্রাণ নেবে| কিন্তু তারা কোন খাবারের সন্ধান পাবে না| কারণ মাঠে কোন সবুজের চিহ্ন থাকবে না|” 7 “আমরা আমাদের ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি| আমরা আমাদের পাপের জন্য কষ্ট পাচ্ছি| হে প্রভু, আপনার নামের দোহাই, আমাদের সাহায্য করবার জন্য কিছু করুন| আমরা স্বীকার করছি আমরা পাপী, আমরা বার বার আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছি| 8 ঈশ্বর, আপনিই ইস্রায়েলের আশা ভরসা| এর আগেও বহুবার আপনি ইস্রায়েলকে সমস্যার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন| কিন্তু এখন আপনি একজন বিদেশীর মতো ব্যবহার করছেন| আপনি য়েন পথিকের মতো এক রাত্রি থাকার জন্যই এখানে এসেছেন| 9 আপনি য়েন স্তম্ভিত এক মানুষ| আপনি য়েন একজন সৈনিক যার প্রাণ বাঁচানোর কোন ক্ষমতা নেই| কিন্তু প্রভু, আপনি আমাদের সঙ্গেই আছেন| আপনার নাম ধরেই আমাদের ডাকা হয়| সুতরাং আমাদের সাহায্য না করে আপনি চলে যাবেন না|” 10 যিহূদার লোকদের সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল: “যিহূদার লোকরা আমাকে ছেড়ে দিতে ভালোবাসে| তারা আমাকে ত্যাগ করা থেকে নিজেদের নিবৃত্ত করেনি| সুতরাং এখন প্রভুও তাদের গ্রহণ করবেন না| প্রভু এখন তাদের সব বাজে কাজ করার কথা স্মরণ করবেন| প্রভু তাদের পাপের শাস্তি দেবেন|” 11 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের জন্য ভাল কিছু চেয়ে আমার কাছে প্রার্থনা কোরো না| 12 খুব সম্প্রতি হয়তো যিহূদার লোকরা উপবাস করতে এবং আমার কাছে প্রার্থনা করতে শুরু করবে| কিন্তু আমি তাদের প্রার্থনা শুনব না| এমনকি তারা যদি আমাকে হোমবলি এবং শস্য নৈবেদ্য দিতে চায় তাও আমি গ্রহণ করব না| যুদ্ধ ডেকে এনে যিহূদার লোকদের আমি ধ্বংস করব| আমি তাদের খাদ্য সরিয়ে নিয়ে যাব| এবং তারা দুর্ভিক্ষের সামনে পড়বে| মহামারী ডেকে এনে আমি তাদের ধ্বংস করব|” 13 কিন্তু আমি প্রভুকে বলেছিলাম, “প্রভু, আমার মালিক, ভাব্বাদীরা লোকদের অন্য কিছু বলছিল| তারা যিহূদার লোকদের বলছিল, ‘শএুর তরবারি তোমাদের ক্ষতি করবে না| তোমরা অনাহারে কষ্ট পাবে না| প্রভু তোমাদের এই দেশে শান্তি এনে দেবে|”‘ 14 তখন প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “যিরমিয়, ঐ ভাব্বাদীরা আমার নাম নিয়ে মিথ্য়ে ধর্মোপদেশ প্রচার করছে| আমি ঐ ভাব্বাদীদের পাঠাই নি| আমি তাদের আমার কথা দিয়ে আদেশও দিইনি| ঐ ভাব্বাদীরা মিথ্য়ে দর্শন, মূল্যহীন যাদু এবং জাগরণ-স্বপ্ন প্রচার করছে| সেটা তাদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণা| য়ে ধারণা অন্তঃসারশূন্য ভোজবাজি ছাড়া আর কিছু নয়| 15 ঐ ভাব্বাদীরা, যারা আমার নাম নিয়ে ধর্ম-প্রচার করে তাদের নামে আমি এ-ই বলি| আমি তাদের পাঠাই নি| ঐ ভাব্বাদীরা বলেছিল, ‘কোন শএু এই দেশ আক্রমণ করতে পারবে না| এই দেশে অনাহার বলে কিছু থাকবে না|’ ঐ ভাব্বাদীরা অনাহারে মারা যাবে এবং শএুর তরবারির আঘাতে তাদের মৃত্যু ঘটবে| 16 এবং লোকদের, যাদের ভাব্বাদীরা ধর্মোপদেশ দিত, তাদের রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে| অনাহারে এবং শএুর তরবারিতে তাদের মৃত্যু ঘটলে কেউ তাদের কবর দিতে এগিয়ে আসবে না| কেউই আসবে না, এমন কি তাদের স্ত্রী পুত্র কন্যারাও নয়| আমি তাদের শাস্তি দেব| 17 “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের কাছে এই বাণী উচ্চারণ করো: ‘আমার চোখ জলে ভরে গিয়েছে| দিন রাত্রি আমি শুধুই কাঁদব| আমি আমার অক্ষত য়োনী কন্যার জন্য কাঁদব| কাঁদব আমার লোকেদের জন্য| কারণ কেউ তাদের আঘাত করেছে| তারা গুরুতরভাবে আহত| 18 যদি আমি সেই দেশটিতে যাই তবে আমি তরবারির আঘাতে নিহত মানুষদের দেখতে পাব| যদি আমি সেই শহরে যাই তাহলে খাদ্যের অভাবে বহু অসুস্থ মানুষকে দেখতে পাব| যাজক এবং ভাব্বাদীদের কোনও ভিন্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে|”‘ 19 লোকরা বলল, “প্রভু আপনি কি যিহূদাকে পুরোপুরি বাতিল করে দিয়েছেন? প্রভু আপনি কি সিয়োনকে ঘৃণা করেন? আপনি আমাদের এমন আঘাত করেছেন য়ে আমরা আর কখনও সুস্থ হয়ে উঠতে পারবো না| কেন আপনি এরকম করলেন? আমরা শান্তির আশায় বসে থাকলেও ভাল কিছু ঘটছে না| আমরা সেরে ওঠার অপেক্ষায বসে রইলাম কিন্তু শুধুই সন্ত্রাস এলো| 20 প্রভু, আমরা জানি আমরা খারাপ লোক| আমরা জানি আমাদের পূর্বপুরুষরাও অনেক খারাপ কাজ করেছিল| হ্যাঁ আমরা আপনার বিরুদ্ধে অনেক পাপ করেছি| 21 আপনার নামের দোহাই, আমাদের ঠেলে সরিয়ে রাখবেন না| আপনার মহিমান্বিত সিংহাসনকে অসম্মান অনাদরের পাত্র করবেন না| আপনার সঙ্গে আমাদের চুক্তির কথা স্মরণ করুন| আপনি সেই চুক্তি ভঙ্গ করবেন না| 22 বিদেশী মূর্ত্তিদের বৃষ্টি আনার ক্ষমতা নেই| আকাশেরও বৃষ্টি ঝরানোর শক্তি নেই| আপনিই আমাদের একমাত্র আশা ভরসা| আপনিই সব কিছুর স্রষ্টা|”
1 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “এমন কি যদি মোশি এবং শমূযেল আমার কাছে যিহূদার লোকদের হয়ে প্রার্থনা করে তাহলেও আমি তাদের প্রতি করুণা করব না, যিরমিয়| যিহূদার লোকদের আমার কাছে আসতে দিও না| ওদের চলে য়েতে বলো| 2 ওরা হয়তো তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘আমরা কোথায় যাব?’ তুমি ওদের একথা বলো: প্রভু যা বললেন,‘আমি কিছু লোককে মৃত্যুর জন্য মনোনীত করেছি| তারা মরবে| আমি তরবারি দিয়ে নিহত হবার জন্য কিছু মানুষকে নির্বাচন করেছি| তারা তরবারির আঘাতেই মারা যাবে| আমি কিছু লোককে নির্বাচন করেছি অনাহারে মৃত্যুর জন্য| তারা অনাহারেই মারা যাবে| আমি কিছু লোককে বন্দী করে বিদেশে পাঠাবার জন্য নির্বাচন করেছি, তারা বিদেশে কয়েদীদের মতো বন্দী থাকবে| 3 আমি তাদের বিরুদ্ধে চার ধরণের ধ্বংসকারককে পাঠাব|’ এই হল প্রভুর বার্তা| ‘আমি তরবারি হাতে শএুকে পাঠাব তাদের মারতে| আমি সেই মৃতদেহগুলি টেনে নিয়ে য়েতে কুকুর পাঠাব| আমি চিল, শকুন এবং বন্য জন্তুদের পাঠাব তাদের মাংস খাওয়ার জন্য| 4 আমি যিহূদার লোকদের ভয়ঙ্কর এক উদাহরণ হিসেবে সারা বিশ্বের সামনে খাড়া করব| য়েহেতু যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের পুত্র মনঃশি জেরুশালেমে কুকর্ম করেছিল তাই আমিও যিহূদার সঙ্গে সেই একই জিনিষ করব|’ 5 “জেরুশালেম শহর কেউ তোমার জন্য দুঃখ অনুভব করবে না| কেউ দুঃখে তোমার জন্য কেঁদে উঠবে না| এমন কি তুমি কেমন আছো এ কথা জিজ্ঞাসা করবার দায কারো থাকবে না| 6 জেরুশালেম, তুমি আমায় ছেড়ে চলে গিয়েছিলে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “বারবার তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছো| তাই আমি তোমাকে শাস্তি দেব এবং ধ্বংস করব| তোমার শাস্তি পিছোতে পিছোতে আমি ক্লান্ত| 7 যিহূদার লোকদের আমি আমার কাঁটাযুক্ত দণ্ড দিয়ে তুলে আলাদা করে দেব| শহরের ফটকের সামনে থেকেই তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেব| আমার লোকরা বদলায নি| তাই আমি তাদের ধ্বংস করব| আমি তাদের ছেলেমেযেদের সরিয়ে নিয়ে যাব| 8 অনেক স্ত্রী তাদের স্বামীকে হারাবে| সমুদ্রে যত বালি আছে তার থেকেও বেশী সংখ্যার বিধ্বা সেখানে বাস করবে| আমি দুপুরে বয়ে আনব এক ধ্বংসকর্তাকে| সেই ধ্বংসকর্তা যিহূদার যুবকদের মাকে হত্যা করবে, যিহূদার লোকদের জন্য আমি শুধু ভয় আর যন্ত্রণা বয়ে আনবো| খুব শীঘ্রই আমি এটি ঘটাবো| 9 তাদের শএু তরবারি হাতে আক্রমণ করে হত্যা করবে| যিহূদার জীবিত সমস্ত লোককে তারা হত্যা করবে| এক জন মায়ের হয়ত সাত জন পুত্র থাকবে, কিন্তু তার সব পুত্রই মারা যাবে| সেই মহিলা শুধু কাঁদতেই থাকবে যতক্ষণ পর্য়ন্ত না তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়| সে মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ বিপর্য়স্ত হয়ে পড়বে| তার উজ্জ্বল দিনগুলি দুঃখের অন্ধকার গ্রাস করে নেবে|” 10 মা, আমি (যিরমিয়) দুঃখিত য়ে তুমি আমায় জন্ম দিয়েছো| আমিই হচ্ছি সেই ব্যক্তি যাকে পুরো দেশটিকে অভিযুক্ত ও সমালোচনা করতে হবে| আমি ধারদাতাও নই, ধারগ্রাহকও নই| তবু আমাকে প্রত্যেকে অভিশাপ দিচ্ছে| 11 প্রভু, আমি সত্যিই আপনাকে ভাল ভাবে সেবা করেছি| আমার শএুরা যখন আমায় বিপদে ফেলেছিল তখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি| 12 “যিরমিয় তুমি জানো য়ে কেউ লোহাকে চূর্ণ করতে পারে না| এমন কি পিতলকেও নয়| আমি উত্তরের়লোহার কথা বলছি| 13 যিহূদার লোকদের প্রচুর ধনসম্পত্তি আছে| আমি সেই সব সম্পত্তি অন্যদের মধ্যে বিলিযে দেব| ঐ লোকদের ঐ সব সম্পত্তি কিনতে হবে না| কেন? কারণ যিহূদার লোকরা অনেক অনেক পাপ করেছে| তারা যিহূদার সর্বত্র পাপ করেছে| 14 যিহূদার লোকরা, তোমাদের আমি তোমাদের শএুর কাছে দাস করে রাখবে| অচেনা এক দেশে তোমরা দাসত্ব করবে| আমি প্রচণ্ড রুদ্ধ| আমার রোধ হল তপ্ত আগুনের মতোই এবং তোমরা তাতে পুড়ে মরবে|” 15 প্রভু, আপনি আমাকে বুঝতে পেরেছেন| আমাকে মনে রেখে আমাকে রক্ষা করুন| লোকরা আমাকে আঘাত করে চলেছে| ওদের য়োগ্য শাস্তি দিন| ওদের প্রতি আপনি য়ে ধৈর্য়্য়ের পরীক্ষা দিচ্ছেন তাতে আমি য়েন ধ্বংস হয়ে না যাই| আমার সম্বন্ধে ভাবুন| আপনার জন্য য়ে কষ্ট ও যন্ত্রণা আমি ভোগ করছি সে ব্যাপারে একটু ভাবুন প্রভু| 16 আপনার বার্তা আমার কাছে পৌঁছেছিল| আপনার কথাগুলো আমার কাছে এসেছিল এবং সেগুলি আমি হজম করে ফেললাম| আপনার বার্তা আমাকে খুশী করেছিল| আমাকে আপনার নামে ডাকতে পারবার জন্য আমি খুশী হয়েছিলাম| আপনার নাম হল: “প্রভু সর্বশক্তিমান|” 17 আমি কখনও জনতার সঙ্গে বসিনি| য়েহেতু তারা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিল| আমি নিজেকে নিয়ে বসেছিলাম, কারণ আপনার প্রভাব আমার ওপর রয়েছে| আমার চারপাশে অসততার জন্যই আপনি আমাকে এোধ দিয়ে ভরে দিয়েছিলেন| 18 আমি বুঝতে পারি না কেন এখনও আমি ব্যাথা বোধ করি| আমি বুঝতে পারি না কেন আমার ক্ষত সেরে ওঠে না| প্রভু, আমার মনে হয় আপনি বদলে গিয়েছেন| আপনি হলেন শুকিয়ে যাওয়া ঝর্ণা| কিংবা হঠাত্ জলের প্রবাহ থেমে যাওয়া একটি ঝর্ণা| 19 তখন প্রভু বলেছিলেন, “যিরমিয়, তুমি নিজেকে বদলিযে আমার কাছে ফিরে এসো তাহলে তোমাকে শাস্তি দেব না| তুমি যদি নিজেকে পরিবর্তন করে আমার কাছে ফিরে আস তাহলেই তুমি আমার সেবা করতে পারবে| ঐসব মূল্যহীন কথা না বলে যদি তুমি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে পারো তবেই তুমি আমার হয়ে কথা বলতে পারবে| যিহূদার লোকদের নিজেদের বদলে ফেলে তোমার কাছে ফিরে আসতে হবে যিরমিয়| কিন্তু তুমি নিজেকে তাদের মতো করে বদলিও না| 20 আমি তোমাকে এমন শক্তিশালী করে তুলব য়ে লোকে ভাববে তুমি পিতলের দেওয়ালের মতো কঠিন| যিহূদার লোকেরা তোমার সঙ্গে যুদ্ধ করলেও তোমাকে ওরা পরাজিত করতে পারবে না| কারণ আমি তোমার সঙ্গে আছি| আমি তোমাকে সাহায্য করব এবং আমিই তোমাকে রক্ষা করব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 21 “আমি তোমাকে ঐসব দুষ্ট লোকদের হাত থেকে রক্ষা করব| ওরা তোমাকে ভয় দেখাবে| কিন্তু আমি তোমাকে ওদের হাত থেকে রক্ষা করবো|”
1 প্রভুর বার্তা আমার কাছে এসেছিল: 2 “যিরমিয় তুমি বিয়ে করতে পারবে না| এখানে তোমার কোন সন্তান থাকবে না|” 3 যিহূদার ছেলেমেযেদের সম্বন্ধে প্রভু এগুলি বললেন| এবং সেই সমস্ত ছেলেমেযেদের পিতা ও মাতার সম্বন্ধে প্রভু যা বললেন: 4 “ঐ লোকগুলোর ভয়ঙ্কর মৃত্যু আসবে| কেউ তাদের জন্য কাঁদবে না| তাদের জন্য কেউ চিতা জ্বালাবে না| মৃতদেহগুলি বিষ্ঠার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে| ওদের মৃত্যু ঘটবে একজন শএুর তরবারির আঘাতে অথবা তারা মারা যাবে অনাহারে| মৃতদেহগুলি শকুন এবং বন্য পশুদের খাদ্য হবে|” 5 সুতরাং প্রভু বললেন, “যিরমিয় কোন শ্রাদ্ধ বাড়ীতে য়েও না| তোমার তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করার দরকার নেই| কারণ আমি আমার আশীর্বাদ ফিরিয়ে নিয়েছি| আমি যিহূদার লোকদের প্রতি দযা দেখাব না| আমি তাদের জন্য দুঃখও প্রকাশ করব না|” এই হল প্রভুর বার্তা| 6 “যিহূদার সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ মানুষ সকলেই মারা যাবে| কেউ তাদের শবদেহ কবর দেবে না, কেউ কাঁদবেও না| কেউ তাদের জন্য শোক প্রকাশ করে মাথার চুল কামিয়ে ফেলবে না| 7 এন্দনরত লোকদের জন্য কেউ খাবার নিয়ে আসবে না| য়ে সমস্ত লোকরা তাদের অভিভাবকের মৃত্যুতে শোক করছে তাদের কোন ব্যক্তি আরাম দেবে না| যারা কাঁদবে তাদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থাও কেউ করে দেবে না| 8 “যিরমিয়, কোন উত্সব মুখর বাড়িতে যাবে না এবং সেই বাড়িতে কোন কিছু খেতেও বসবে না| 9 প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথাগুলি বললেন, ‘খুব শীঘ্রই আমি সমস্ত আনন্দ কোলাহলের শব্দ বন্ধ করে দেব| একটি ব্বিাহ সভায লোকেরা য়ে সব শব্দসমূহ করে আমি সে সব বন্ধ করে দেব| তোমার জীবন কালেই এগুলি ঘটবে| আমি এই কাজগুলি দ্রুত করব|’ 10 “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের তুমি এই কথাগুলি জানিয়ে দাও| তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘প্রভু কেন আমাদের সম্বন্ধে এই ভয়ঙ্কর কথাগুলি বলেছেন? আমরা কি অন্যায় করেছি? আমাদের প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে আমরা কি পাপ করেছি?’ 11 তখন তুমি এগুলি তাদের অবশ্যই বলবে: ‘তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ত্যাগ করেছিল বলেই তোমাদের জীবনে এসব ভয়ঙ্কর জিনিষ আসবে|’ এই হল প্রভুর বার্তা| ‘তারা আমাকে ত্যাগ করে অন্য দেবতাদের সেবা করেছিল| তারা অন্য দেবতাদের পূজা করেছিল| তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার বিধানকে অস্বীকার করে আমাকে ত্যাগ করেছিল| 12 কিন্তু তোমরা য়ে সব পাপ কাজ করেছ তা তোমাদের পূর্বপুরুষদের পাপকাজ থেকে অনেক খারাপ| তোমরা একগুঁযে, জেদী| তোমরা আমাকে অমান্য করে যা খুশী তাই করেছো| 13 তাই তোমাদের আমি এদেশের বাইরে ছুঁড়ে ফেলব| আমি তোমাদের জোর করে বিদেশে পাঠাব| এমন এক দেশে পাঠাব যা তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও অচেনা| সেখানে তোমরা অন্যান্য মূর্ত্তিদের সেবা করতে পারবে| আমি তোমাদের কোন রকম সাহায্য করতে যাব না|’ 14 “লোকরা প্রতিশ্রুতি করো এবং বলো, ‘প্রভুর অস্তিত্ব য়েমন নিশ্চিত, যিনি আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন, সেই রকম নিশ্চিতরূপে| কিন্তু সময় এগিয়ে আসছে|” এই হল প্রভুর বার্তা, “যখন মানুষ আর ঐ কথা বলবে না| 15 লোকরা তখন নতুন কিছু বলবে| তারা বলবে, ‘প্রভুর অস্তিত্ব য়েমন নিশ্চিত যিনি আমাদের উত্তরের দেশ থেকে বার করে এনেছিলেন, সেই রকম নিশ্চিতভাবে|’ তিনি তাদের নিয়ে এসেছিলেন সেই সব দেশের বাইরে থেকে যেখানে তাদের তিনি পাঠিয়েছিলেন|’ কেন তারা একথা বলবে? কারণ আমি ইস্রায়েলীয়দের পূর্বপুরুষের মাটিতে ফিরিয়ে আনব| 16 “খুব শীঘ্রই আমি অনেক জেলেকে এদেশে পাঠাব” এই হল প্রভুর বার্তা| ঐ জেলেরা যিহূদার লোকদের ধরবে| তারপর আমি অনেক শিকারীকে এদেশে পাঠাব|তারা পাহাড়ে, পর্বতে, পাথরের খাঁজে যেখানেই যিহূদার লোকদের দেখতে পাবে, সেখানেই তাদের শিকার করবে| 17 তারা যা করে তার সবই আমি দেখতে পাচ্ছি| যিহূদার লোকরা যা করেছে তা আমার কাছে গোপন করা সম্ভব নয়| তাদের পাপ আমার কাছে অজানা নয়| 18 তাদের দুষ্ট কাজের জন্য আমি তাদের দ্বিগুণ পরিমাণ ফেরত্ দেব| তাদের প্রতিটি পাপের জন্য আমি তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দেব| কারণ তারা আমার দেশকে অপবিত্র করে দিয়েছে| তারা তাদের ভয়ঙ্কর মূর্ত্তিদের দিয়ে আমার দেশকে অপবিত্র করে তুলেছে| আমি ঐ মূর্ত্তিদের ঘৃণা করি| সেই জন্য আমি তাদের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করব|” 19 প্রভু, আপনি আমার শক্তি, আপনি আমার রক্ষক| আপনি বিপদের সময়ে আশ্রয় নেওয়ার জন্য এক নিরাপদ জায়গা| পৃথিবীর সমস্ত দেশ আপনার কাছে আসবে| তারা বলবে, “আমাদের পিতাদের দেশে ছিল মূর্ত্তি| তারা ঐ সমস্ত অসার মূর্ত্তিদের পূজা করেছিল| কিন্তু ঐ মূর্ত্তিরা এতটুকুও সাহায্য করেনি|” 20 মানুষ কি তার নিজের জন্য প্রকৃত দেবতাকে তৈরী করতে পারে? না তারা শুধু মূর্ত্তি বানাতে পারে| কিন্তু ঐ সব মূর্ত্তিরা প্রকৃত দেবতা নয়| 21 প্রভু বললেন, “যারা মূর্ত্তি বানায় সেই সব লোকদের আমি শিক্ষা দেব| ওদের আমি আমার ক্ষমতা ও শক্তির সম্বন্ধে শিক্ষা দেব| তাহলে তারা উপলব্ধি করতে পারবে য়ে আমিই ঈশ্বর| তারা জানবে আমিই প্রভু|”
1 “যিহূদার লোকদের পাপ এক জায়গায় লেখা আছে যেখানে সেইগুলো মোছা যায় না| লোহার কলম দিয়ে এবং ডগায হীরেদেওয়া কলম দিয়ে ঐ পাপগুলো পাথরের ওপর লেখা হয়েছে| এবং ঐ সব পাথরগুলি হল তাদের হৃদয়| ঐ সব পাপ লেখা হয়েছে তাদের উত্সর্গের বেদীর শৃঙ্গে| 2 তাদের সন্তানরা মনে রাখে সেই উত্সর্গের বেদীর কথা যা মূর্ত্তিসমূহকে উত্সর্গ করা হয়েছিল| তারা মনে রাখে সেই কাঠের খুঁটিগুলিকে য়েগুলো উত্সর্গ করা হয়েছিল আশেরাকে| তারা সেই সব জিনিষ মনে রাখে পাহাড় চূড়ায় এবং গাছের নীচে| 3 তারা মনে করবে উন্মুক্ত প্রান্তরে পর্বতের ওপরে কি হয়েছিল| যিহূদার লোকদের প্রচুর ধনসম্পত্তি| আমি এই সব অন্য লোকদের বিলিযে দেব| সেই লোকরা তোমাদের দেশে মূর্ত্তিসমূহের সমস্ত উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করে দেবে| তোমরা সেই সমস্ত জায়গায় পূজা করেছো| এবং সেটা একটা পাপ| 4 আমি তোমাদের য়ে দেশ দিয়েছিলাম তা তোমরা হারাবে| তোমাদের শএুদের আমি তোমাদের দেশ নিয়ে নিতে দেব এবং তোমাদের তাদের দাস হতে দেব এমন এক দেশে য়েটা তোমরা জানো না| কারণ আমি ভীষণ রুদ্ধ| আমার রোধ হল গনগনে আগুনের মতো এবং তোমরা সেই আগুনের লেলিহান শিখায় চির দিনের জন্য পুড়ে ছাই হয়ে যাবে|” 5 প্রভু এগুলি বললেন, “যারা অন্যদের বিশ্বাস করে, তাদের জীবনে অমঙ্গল ঘটবে| অন্যদের শক্তির ওপর যারা ভরসা করে থাকে তাদের ক্ষেত্রেও অমঙ্গল ঘটবে| কারণ ঐ লোকরা প্রভুর প্রতি বিশ্বাস হারিযেছে| 6 ঐ সমস্ত লোকরা হল জনমানবহীন মরুভূমির কাঁটা ঝোপের মতো| তপ্ত, শুষ্ক এবং অনুর্বর মাটিতেও তারা জন্মায়| সেই সব ঝোপঝাড় জানে না ঈশ্বর কত ভাল জিনিস দিতে পারেন| 7 কিন্তু য়ে ব্যক্তি প্রভুতে বিশ্বাস রাখবে, সে প্রভুর আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হবে না| কারণ প্রভু তাকে দেখাবেন য়ে তাঁকে বিশ্বাস করা যায়| 8 এই ব্যক্তি জলের ধারে রোপণ করা গাছের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠবে| য়ে গাছের লম্বা শিকড় জলের সন্ধান পাবে, গ্রীষ্মের সময় সেই গাছ ভীত হবে না| সেই গাছের পাতা সর্বদা সবুজ থাকবে| খরার বছরেও সে নিশ্চিন্ত থাকবে| ফলদান থেকে সে কখনও বিরত থাকবে না| 9 “মানুষের মন খুবই কৌশলপূর্ণ| তার অসুস্থ অবস্থার কোন চিকিত্সা নেই| কিন্তু আমিই প্রভু এবং আমি মানুষের হৃদয়ও পরিষ্কার দেখতে পাই| আমি এক জন মানুষের মনকে পরীক্ষা করতে পারি| আমি নির্ধারণ করতে পারি কার কি থাকা উচিত্| আমি এক জন মানুষের কর্মের ফল নির্ধারণ করতে পারি| 10 11 কখনো কখনো একটা পাখী অন্যের ডিমে তা দিয়ে তাকে ফোটায| ঠিক একই ভাবে একজন মানুষ ঠকায এবং অন্যের টাকা আত্মসাত্ করে| সেই টাকা সে তার অর্ধেক জীবনে উড়িযে দেয়| জীবনের শেষ পর্য়াযে সে বুঝতে পারে য়ে সে কত বড় নির্বোধ|” 12 একদম প্রথম থেকেই আমাদের উপাসনাগৃহে ছিল ঈশ্বরের মহিমান্বিত সিংহাসন| তা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান| 13 প্রভু আপনিই ইস্রায়েলের আশা| প্রভু আপনি জীবন্ত ঝর্ণার মত| যদি একজন মানুষ আপনার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয, তার জীবন হয়ে যাবে খুবই ছোট| 14 প্রভু, আমাকে সারিয়ে তুলুন এবং আমি সত্যি সত্যিই সেরে উঠব| আমায় রক্ষা করুন, তাহলে আমি সত্যিই রক্ষা পাব| প্রভু, আমি আপনার প্রশংসা করি! 15 যিহূদার লোকরা আমাকে প্রশ্ন করেই চলেছে| তারা বলছে, “যিরমিয়, প্রভুর বার্তার কি হল? আমাদের দেখতে হবে ঐ বার্তা সত্যি হবে|” 16 প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে দৌড়ে পালাই নি বরং আমি আপনাকেই অনুসরণ করে চলেছি| আমি আপনারই ইচ্ছে মতো মেষপালক হয়েছি| আমি কখনোই চাইনি ভয়ঙ্কর দিন আসুক| প্রভু আমি যা বলেছিলাম, তা সব আপনি জানেন| যা ঘটেছে তার সব কিছুই আপনি নিজের চোখে দেখেছেন| 17 প্রভু আমাকে ধ্বংস করবেন না| আমি অশান্তির সময়গুলোতে আপনার ওপরে নির্ভর করে থাকি| 18 লোকরা আমাকে নির্য়াতন করছে| ওদের লজ্জিত করুন| কিন্তু আমাকে নিরাশ করবেন না| ঐ মানুষদের ভয় পেতে দিন| কিন্তু আমাকে ভীত করে তুলবেন না| প্রলয়ের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলো আমার শএুদের জীবনে আসুক| তাদের চূর্ণ করুন| বারবার তাদের চূর্ণ করুন| 19 প্রভু, আমাকে এই কথাগুলি বললেন: “যিরমিয়, যাও লোকদের ফটকের কাছে গিয়ে দাঁড়াও য়েটার মধ্যে দিয়ে যিহূদার রাজা ভেতরে ঢোকে এবং বাইরে যায়| লোকদের আমার বার্তা শোনাও এবং তারপর জেরুশালেমের প্রত্যেকটি ফটকে গিয়ে একই কাজ করো|” 20 “ঐ লোকদের বলো: ‘প্রভুর বার্তা শোন| শোন যিহূদার রাজা এবং যিহূদার সাধারণ মানুষ| এই ফটক দিয়ে জেরুশালেমে যাতায়াত করা প্রত্যেকটি মানুষ আমার কথা শোন! 21 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: সতর্ক থেকো, তোমরা বিশ্রামের দিনে জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না| 22 বিশ্রামের দিনে ঘরের মালপত্রও নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না| সেদিন কাজেও য়েতে পারবে না| বিশ্রামের দিন তোমরা পবিত্র দিন হিসেবে যাপন করবে| আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও এই আদেশ দিয়েছিলাম| 23 কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি| তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে অমান্য করেছিল| তোমাদের পূর্বপুরুষরা ছিল একগুঁযে ও জেদী| আমি তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি| তারা আমার কোন কথা শোনেনি| 24 কিন্তু তোমরা মন দিয়ে আমার কথা শোন| আমাকে মান্য করো|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা: “‘বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র বয়ে এনো না| বিশ্রামের দিন কাজ করা বন্ধ রেখো এবং ঐ দিনটি পবিত্র ভাবে কাটাও| 25 “‘যদি তোমরা আমার আদেশ মান্য করো, তাহলে দাযূদের সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজগণ জেরুশালেমের ফটক দিয়ে প্রবেশ করবে| রথে চড়ে, ঘোড়ায় চড়ে বিভিন্ন রাজারা আসবে| যিহূদা এবং জেরুশালেমের নেতারা হবে সেই রাজা এবং জেরুশালেম চিরকালের জন্য বসবাসকারী লোক পাবে| 26 যিহূদা শহর থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে| জেরুশালেমের আশপাশের ছোট্ট গ্রাম থেকে, বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর দেশ থেকে, পশ্চিম পাহাড়ের পাদদেশ থেকে এবং নেগেভ থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে| ওরা সবাই সঙ্গে নিয়ে আসবে ধুপধূনা, হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য| তারা সেই সমস্ত উপহার এবং নৈবেদ্য আনবে প্রভুর উপাসনা গৃহের জন্য| 27 “‘কিন্তু যদি তোমরা আমাকে অমান্য করো এবং আমার কথা না শোন তাহলে অমঙ্গল ঘনিয়ে আসবে| যদি তোমরা বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে বোঝা বহন করো এবং তাকে অপবিত্র করো, তাহলে আমি জেরুশালেমের ফটকগুলোতে আগুন বালিয়ে দেব, সেই আগুন যা নেভানো যায় না| সেই আগুন জেরুশালেমের ফটক থেকে শুরু করে সব কিছু পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে|”‘
1 যিরমিয়র কাছে প্রভুর এই বার্তা এসেছিল: 2 “যিরমিয় যাও, কুমোরের বাড়ি যাও| কুমোরের ঘরে আমি তোমাকে আমার বার্তা জানাব|” 3 তাই আমি কুমোরের বাড়ি গিয়েছিলাম| আমি দেখেছিলাম কুমোর তার চাকায় কাদামাটি নিয়ে কাজ করছে| 4 কাদামাটি দিয়ে সে একটি পাত্র তৈরী করছিল| কিন্তু কোথাও কোন গণ্ডগোল হচ্ছিল| তাই কুমোর আবার কাদামাটি চড়াচ্ছিল নতুন পাত্র তৈরীর জন্য| মনের মতো করে হাত দিয়ে সে পাত্রের আকার গড়তে চাইছিল| 5 তখন প্রভুর বার্তা এসে পৌঁছালো আমার কাছে: 6 “ইস্রায়েলের পরিবার, তোমরা জানো য়ে আমি (ঈশ্বর) তোমাদের সঙ্গে এই রকমই করতে পারি| তোমরা হলে কুমোরের হাতে রাখা কাদামাটি আর আমি হলাম কুমোর| 7 হয়তো এমন সময় আসতে পারে যখন আমি তোমাদের একটি দেশ অথবা একটি রাজ্যের সম্বন্ধে কথা বলব| আমি হয়ত বলতে পারি য়ে আমি ঐ দেশটিকে গড়ে তুলব| আবার এও বলতে পারি য়ে আমি ঐ দেশটি ও তার রাজধানীকে ধ্বংস করব| 8 কিন্তু ঐ জাতির লোকরা হয়তো তাদের হৃদয় ও মনের পরিবর্তন করতে পারে| হয়তো তারা আর পাপ কাজসমূহ করবে না| তখন আমিও মত পরিবর্তন করব| তাহলে ঐ জাতির জন্য আমি আর ধ্বংস বয়ে আনব না| 9 আবার সেখানে অন্য এক সময় আসতে পারে যখন আমি আরেকটি জাতির কথা বলবো| আমি হয়ত বলব য়ে আমি ঐ জাতিটিকে গড়ে তুলব এবং স্থাপন করব| 10 কিন্তু আমি যদি দেখি ঐ জাতি খারাপ কাজ করছে এবং আমাকে অমান্য করছে, তাহলে আমাকেও ঐ জাতির জন্য ভাল কাজ করবার য়ে পরিকল্পনা করেছিলাম তার সম্বন্ধে আবার বিবেচনা করতে হবে| 11 “অতএব, যিরমিয়, যিহূদা এবং জেরুশালেমের লোকদের এটা বলো, ‘প্রভু যা বলেছেন তা হল: এই মূহুর্তে আমি তোমাদের জন্য অশান্তি তৈরী করছি| আমি তোমাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করছি| সুতরাং অসত্ কাজ করা বন্ধ করো| প্রত্যেকে ভালো হওয়ার চেষ্টা করো|’ 12 কিন্তু যিহূদার লোকরা উত্তর দেবে, ‘চেষ্টা করে আমাদের বদলাতে চাইলে কোন লাভ হবে না| আমরা যা চাইছি তাই করে যাব| প্রত্যেকেই তার শযতান হৃদয় যা চাইছে তাই করে যাচ্ছে|”‘ 13 প্রভু যা বলেছেন শোন: “অন্য দেশগুলিকে এই প্রশ্নগুলো করো: ‘ইস্রায়েল য়ে খারাপ কাজগুলো করেছে সেইগুলো অন্য কোন লোককে কখনও করতে শুনেছ?’ ইস্রায়েল হল ঈশ্বরের বিশেষ কেউ| ইস্রায়েল হল ঈশ্বরের কনের মতো| 14 তোমরা জানো য়ে প্রস্তরখণ্ড কখনও নিজের ইচ্ছেয় মাঠ ছেড়ে য়েতে পারে না| তোমরা জানো য়ে লিবানোনের পর্বত শৃঙ্গের বরফ কখনোও গলে যায় না| তোমরা জানো য়ে শৈত্য প্রবাহ কখনও শুষ্ক হয়ে যায় না| 15 কিন্তু আমার লোকরা আমাকে ভুলে অসার মূর্ত্তিদের সামনে নৈবেদ্য সাজাচ্ছে| আমার লোকরা তাদের এই কৃতকার্য়ের জন্য হোঁচট খাচ্ছে| তারা তাদের পূর্বপুরুষদের তৈরী পুরানো পথেও হোঁচট খাচ্ছে| আমার লোকরা আমাকে ভালো রাস্তায় অনুসরণ করার চেয়ে বরং পিছনের রাস্তায় এবং খারাপ রাস্তা দিয়ে হাঁটবে| 16 সুতরাং যিহূদা শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে| লোকরা তাদের দেশের এই করুণ অবস্থা দেখে প্রচণ্ড আঘাত পাবে| তারা শুধু শিস্ দিতে দিতে মাথা নাড়বে| 17 আমি যিহূদার লোকদেরও ছড়িয়ে দেব| তারা তাদের শএুদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে| আমি পূর্বদিকের ঝড়ের মত যিহূদার লোকদের ছত্রভঙ্গ করে দেব| ধ্বংস করে দেব ওদের| ওরা দেখতে পাবে আমি ওদের সাহায্য না করে দিব্য়ি ওদের ছেড়ে চলে যাচ্ছি|” 18 তখন যিরমিয়র শএুরা বলল, “এসো আমরা একত্রে মিলে যিরমিয়র বিরুদ্ধে চএান্তের উপায় বের করি| যাজকের দেওয়া অনুশাসনের শিক্ষা নিশ্চয়ই হারিযে যাবে না এবং জ্ঞানীদের উপদেশ আমাদের সঙ্গে আছে| ভাব্বাদীদের কথাও আমাদের সঙ্গে এখনও আছে| সুতরাং চলো যিরমিয়র বিরুদ্ধে আমরা স্য়ুা প্রচার চালাই| এই প্রচারই তাকে শেষ করে দেবে| তার কোন কথাকেই আমরা পাত্তা দেব না|” 19 প্রভু আমার কথা শুনুন! আমার যুক্তি শুনে বিচার করুন কে সঠিক| 20 আমি লোকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে খারাপ জিনিষ প্রতিদান দিচ্ছে| তারা আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছে এবং হত্যা করতে চাইছে| প্রভু, ঐ লোকদের ভালো করবার জন্য এবং ওদের ওপর রাগ করা বন্ধ করবার জন্য আপনার কাছে কত ভিক্ষা করেছিলাম মনে করুন| 21 সুতরাং ওদের ছেলেমেযেরা খরায় অনাহারে মরল| শএুরা ওদের পরাজিত করুক| তাদের মহিলারা সন্তান হারাক| তারা বিধ্বাও হয়ে যাক| যিহূদার সমস্ত পুরুষকে হত্যা করা হোক| ওদের স্ত্রীরা বিধ্বার জীবনযাপন করুক| যুদ্ধে মারা যাক যিহূদার সমস্ত যুবক| 22 ঘরে ঘরে কান্নার রোল উঠুক| যখন আপনি হঠাত্ ওদের বিরুদ্ধে শএুর আক্রমণ ঘটাবেন তখন ওরা কাঁদুক| এই সব কিছু ঘটুক কারণ আমার শএুরা আমাকে ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিল| তারা আমার জন্য ফাঁদ পেতে রেখেছিল তার মধ্যে পড়বার জন্য| 23 প্রভু, আমাকে হত্যা করবার জন্য ওরা য়ে পরিকল্পনা করেছিল আপনি তা জানেন| ওদের এই অপরাধ ক্ষমা করবেন না| ওদের পাপকে মুছে দেবেন না| আমার শএুদের ধ্বংস করে দিন| যখন আপনি রুদ্ধ হবেন তখন ওদের শাস্তি দেবেন!
1 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “যিরমিয়, যাও কুমোরের কাছ থেকে এংটা মাটির পাত্র কিনে আনো| 2 খর্ত্রর ফষ্টকের কাছে বেন-হিন্নোম উপত্যকায় যাও| সঙ্গে কিছু নেতা ও যাজককে নাও| সেখানে তাদের আমি যা বলেছি তা বলো| 3 তাদের বলো, ‘যিহূদার রাজা এবং জেরুশালেমের মানুষ, প্রভুর বার্তা শোন! প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল এই: আমি খুব শীঘ্রই এই স্থানে ভয়ঙ্কর কিছু ঘষ্টাবো| প্রত্যেকে এই ঘষ্টনার কথা শুনে হতবাক হয়ে যাবে, ভয় পাবে| 4 যিহূদার লোকরা আমাকে পরিত্যাগ করেছে বলে আমি এগুলো ঘষ্টাবো| তারা এই দেশটাকে বিদেশী দেবতাদের জায়গা বানিয়ে তুলেছে| যিহূদার লোকরা অন্য দেবতাদের জন্য এই জায়গায় হোমবলি দিয়েছে| তারা অনেক আগে ঐ মূর্ত্তির পূজা করত না| তাদের পূর্বপুরুষরাও ঐ নতুন মূর্ত্তির পূজা করত না| এগুলি সব অন্যান্য দেশের নতুন দেবতা| যিহূদার রাজা এই দেশের মাটি নিরীহ শিশুদের রক্তে ভিজিযেছে| 5 যিহূদার রাজারা এই উচ্চ স্থানগুলি বাল মূর্ত্তির জন্য তৈরী করেছে| সেই স্থানকে তারা নিজেদের সন্তানদের বাল মূর্ত্তিকে হোমবলি উত্সর্গ হিসেবে ব্যবহার করত| বালের মূর্ত্তিকে হোমবলি দেওয়ার জন্য তারা নিজের সন্তানদের পুড়িয়ে মেরেছে| আমি তাদের এই সব করতে বলিনি| আমি বলিনি তাদের সন্তানকে এভাবে নৈবেদ্য হিসেবে বলি দিতে| আমি কখনো এংথা ভাবতেও পারি না| 6 এখন মানুষ এই জায়গাকে তোফত ও হিন্নোম উপত্যকা বলে ডাকে| কিন্তু আমি তোমাদের সাবধান করে দিচ্ছি| এই বার্তাটি হল প্রভুর কাছ থেকে: “দিন আসছে, যখন মানুষ এই জায়গাকে নিধন উপত্যকা বলে সম্বোধন করবে| 7 এই জায়গাতেই আমি যিহূদা এবং জেরুশালেমের লোকদের পরিকল্পনাগুলি ধ্বংস করব| শএু এই লোকদের তাড়া করবে এবং আমি তরবারির আঘাতে তাদের মৃত্যু দেখব| তাদের মৃতদেহ শকুন এবং বন্য জন্তুরা ছিঁড়ে খাবে| 8 আমি এই শহর পারোপুরি ধ্বংস করে দেব| জেরুশালেমের পাশ দিয়ে যাবার সময় লোকরা শিস্ দিতে দিতে মাথা নাড়বে| যখন তারা দেখবে এই শহর কি করে ধ্বংস হয়েছিল তখন তারা আশ্চর্য়্য় হয়ে যাবে| 9 শএু তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে এ শহর ঘিরে ফেলবে| সৈন্যরা লোকদের খাদ্যের সন্ধানে শহরের বাইরে য়েতে দেবে না| ফলে তারা অনাহারে কষ্ট পাবে| অনাহারে যন্ত্রণায় তারা তাদের নিজের সন্তানদের শরীর ছিঁড়ে খাবে| এবং তারপর তারা নিজেরাই একে অন্যের মাংস ছিঁড়ে খাবে|’ 10 যিরমিয়, লোকদের এই কথাগুলি বলো| এবং যখন তারা তোমাকে লক্ষ্য করবে তখন তুমি পাত্রটিকে ভেঙ্গে ফেলবে| 11 সেই সময় এই কথাগুলি বলো: ‘প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, এই মাটির পাত্রের মতোই আমি যিহূদা এবং জেরুশালেমকে ভেঙ্গে গুঁড়িযে দেব| য়েমন ঐ মাটির পাত্রটিকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না| যিহূদার সম্বন্ধেও সেই এংই ব্যাপার হবে| যিহূদার সমস্ত মৃত লোকদের তোফতে কবর দেওয়া হবে যতক্ষণ সেখানে কবর দেওয়ার মতো জায়গা অবশিষ্ট থাকবে| 12 আমি যিহূদার মানুষদের অবস্থাও তোফতের মতো করব|’ এই হল প্রভুর বার্তা| 13 ‘জেরুশালেমের প্রত্যেকটি বাড়ি তোফতের মতোই অপবিত্র হয়ে গিয়েছে| এমন কি রাজাদের প্লাসাদগুলিও তোফতের মতো ধ্বংস হয়ে যাবে| কেননা, ঐ সব বাড়ির ছাদে বসে মানুষ মূর্ত্তিসমূহের পূজা করেছে| তারা নক্ষত্রদেরও পূজা করেছে এবং তাদের সম্মান জানাতে তাদের উদ্দেশ্যে হোমবলি দিয়েছে| তারা মূর্ত্তিসমূহের পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছে|”‘ 14 এরপর যিরমিয় তোফত ছেড়ে চলে গেল, সেই জায়গা যেখানে প্রভু তাকে ভাব্বাণী করতে পাঠিয়েছিলেন| যিরমিয় প্রভুর উপাসনাগৃহে গেল এবং উপাসনাগৃহের চত্বরে উন্মুক্ত জমিতে গিয়ে দাঁড়াল| যিরমিয় সমস্ত মানুষকে বলল: 15 “প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বললেন: ‘আমি বলেছিলাম, আমি জেরুশালেম এবং তার চারপাশের গ্রামগুলিতে অনেক দুর্বিপাক আনব| খুব শীঘ্রই ঐ ঘষ্টনা ঘষ্টাবো| কারণ ঐ লোকরা ভীষণ জেদী| ওরা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছে এবং আমাকে অমান্য করেছে|”‘
1 পশ্হূর ছিল এক যাজক| প্রভুর উপাসনাগৃহের সে ছিল প্রধান যাজক| পশ্হূরের পিতার নাম ছিল ইম্মের| পশ্হূর শুনতে পেল প্রভুর উপাসনাগৃহের চত্বরে যিরমিয় ধর্মোপদেশ প্রচার করছে| 2 তাই সে ভাব্বাদী যিরমিয়কে প্রহার করেছিল| সে যিরমিয়র হাত এবং পাগুলি কাঠের গুঁড়ির মাঝখানে বেঁধে রেখেছিল| এটা ঘটেছিল প্রভুর মন্দিরে বিন্যামীনের উচ্চতর ফটকে| 3 পরদিন যখন পশ্হূর যিরমিয়কে সেই কাঠের খণ্ডের ভেতর থেকে বের করে আনল তখন যিরমিয় পশ্হূরকে বলেছিল, “তোমার, পশ্হূর নামটি প্রভুর দেওয়া নয়| এখন প্রভু তোমার নাম দিলেন সর্বদিকের সন্ত্রাস| 4 এটা তোমার নাম, কারণ প্রভু বলেছেন, ‘শীঘ্রই আমি তোমাকে তোমার নিজের কাছেই একটি সন্ত্রাসে পরিণত করব| তুমি তোমার সমস্ত বন্ধু-বান্ধবের কাছেও সন্ত্রাস হিসেবে পরিচিতি পাবে| তুমি লক্ষ্য করবে শএুর তরবারি তোমার বন্ধুদের হত্যা করছে| আমি যিহূদার সমস্ত লোকদের বাবিলের রাজাকে দিয়ে দেব| তিনি তাদের বাবিলে নিয়ে যাবেন| তাঁর সৈন্যরা তাদের তরবারি দিয়ে মেরে ফেলবে| 5 ধনসম্পদ অর্জন করতে জেরুশালেমের মানুষ পরিশ্রম করেছিল| কিন্তু আমি তাদের সমস্ত ধনসম্পদ শএুদের দিয়ে দেব| যিহূদার রাজাদেরও প্রচুর ঐশ্চর্য় ছিল| আমি সেই ঐশ্বর্য়ও শএুদের দিয়ে দেব| শএুবাহিনী সেই সব ধনসম্পদ ঐশ্বর্য় সমেত যিহূদার লোকদেরও বাবিলে নিয়ে যাবে| 6 পশ্হূর, তুমি এবং তোমার পরিবারও এর থেকে মুক্তি পাবে না| তোমাকে বাধ্য করা হবে বাবিলে চলে যাওয়ার জন্য| তোমার মৃত্যু হবে বাবিলে| সেখানেই তোমাকে সমাহিত করা হবে| তুমি তোমার বন্ধুদের কাছে মিথ্যা ধর্মোপদেশ প্রচার করেছিলে| তুমি বলেছো এটা ঘটবে না| কিন্তু তোমার বন্ধুরাও বাবিলে মারা যাবে এবং সেখানেই তাদের সমাহিত করা হবে|”‘ 7 প্রভু, আপনি কৌশল করেছিলেন এবং আমি প্রতারিতাহয়েছিলাম| আপনি আমার চেয়ে শক্তিশালী তাই আপনি জিতে গেলেন| আমি মানুষের কাছে হাস্যকর হয়ে গেলাম | ওরা আমাকে নিয়ে সারাদিন ধরে হাসাহাসি করল| 8 আমি যখনই কথা বলি, হিংসা ও ধ্বংসের বিরুদ্ধে চেঁচাই| প্রভুর বার্তা আমি লোকেদের জানিয়ে এসেছি| কিন্তু লোকরা আমাকে অপমান করেছে, আমাকে নিয়ে উপহাস করেছে| 9 কখনো আমি নিজে নিজে বলেছি, “আমি প্রভুকে ভুলে যাব| প্রভুর নাম করে আর কথা বলব না|” যখন আমি একথা বলি তখনই প্রভুর বার্তা আমার শরীরের ভেতরে আগুনের মতো জ্বালায পোড়ায| হাড়ের ভেতর সেই জ্বালা পোড়া এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে য়ে আমি আর ঠিক থাকতে পারি না, ক্লান্ত হয়ে পড়ি| প্রভুর বার্তা শরীরের ভেতরে আর ধরে রাখতে পারি না| 10 আমি শুনতে পাচ্ছি লোকরা আমার বিরুদ্ধে ফিসফিস করে কথা বলছে| সব জায়গায় একই কথা শুনে আমি ভয় পাই| এমন কি আমার বন্ধুরাও আমার বিরুদ্ধে কথা বলছে| লোকরা আমার ভুল করবার অপেক্ষায রয়েছে| তারা বলছে, “চলো আমরা একটা মিথ্য়ে কথা বলি য়ে সে একটা ভীষণ খারাপ কাজ করেছে| অসত্ কাজ করি| আমরা হয়তো যিরমিয়কে প্রতারণাপূর্বক কৌশল করতে পারব| তাহলে পরিশেষে আমরা তার হাত থেকে মুক্তি পাবো| তারপর আমরা তাকে বন্দী করব এবং প্রতিশোধ নেব|” 11 কিন্তু প্রভু আমার সঙ্গে আছেন| প্রভু একজন শক্তিশালী সৈন্যের মত| তাই লোকরা যারা আমাকে তাড়া করছে তারা হোঁচট খাবে| তারা আমাকে হারাতে পারবে না| তারা নিজেরাই হেরে গিয়ে হতাশ হবে| তারা এমন অপমানিত হবে য়ে সেই লজ্জা তারা কখনো ভুলতে পারবে না| 12 সর্বশক্তিমান প্রভু তুমি সত্ লোকদের পরীক্ষা করো| তুমি আমাদের হৃদয়ের এবং মনের ভেতর গভীরভাবে দেখ| আমি তোমার সামনে ঐ সব লোকদের বিরুদ্ধে যুক্তিসমূহ এনেছিলাম যাতে হয়ত আমি দেখতে পাই য়ে তুমি ওদের শাস্তি দেবে| 13 প্রভুর কাছে গান কর! তাঁর প্রশংসা কর| প্রভু অসহায় মানুষকে ক্ষতিকর মানুষের কবল থেকে রক্ষা করেন| 14 অভিশাপ দাও সেই দিনটিকে য়েদিন আমি জন্ম নিয়েছিলাম| য়েদিন আমার মা আমাকে পেয়েছিল সেই দিনটিকে আশীর্বাদ কোরো না| 15 অভিশাপ দাও সেই মানুষটিকে য়ে আমার পিতাকে আমার জন্ম সংবাদ দিয়েছিল| সে বলেছিল, “তোমার একটি পুত্র সন্তান হয়েছে|” সে আমার পিতাকে এই সংবাদ দিয়ে খুশী করেছিল| 16 ঐ মানুষটিরও দশা হোক সেই সব শহরের মতো য়েগুলো প্রভু ধ্বংস করেছেন| প্রভু ঐ শহরগুলির ওপর কোন করুণা দেখান নি| ঐ মানুষটি য়েন প্রত্যেকদিন সকালে যুদ্ধের আর্তনাদ শুনতে পায়| দুপুর বেলায সে যুদ্ধনাদ শুনুক| 17 কারণ সে আমাকে মাতৃগর্ভে থাকাকালীন হত্যা করেনি| সে যদি আমাকে হত্যা করত তাহলে আমার কবর হত| আমার মাতৃগর্ভ এবং আমি কখনও জন্মগ্রহণই করতাম না| 18 আমাকে কেন আমার মাতৃগর্ভ থেকে বাইরে আসতে হল? আমি এই পৃথিবীতে যা কিছু দেখেছি তা হল দুঃখ এবং সমস্যাসমূহ| এবং আমার জীবন শেষ হবে দুঃখে ও অপমানে|
1 যিরমিয়র কাছে এই বার্তা এসেছিল যখন যিহূদার রাজা সিদিকিয় যিরমিয়র কাছে দুজন লোককে পাঠিয়েছিল: পশ্হূর এবং যাজক সফনিয় তখন এই বার্তা যিরমিয়র কাছে এসেছিল| পশ্হূর ছিল মল্কিযের পুত্র এবং সফনিয় ছিল মাসেযের পুত্র| পশ্হূর এবং সফনিয় যিরমিয়র জন্য একটি বার্তা বয়ে এনেছিল| 2 পশ্হূর ও সফনিয় যিরমিয়কে বলেছিল, “আমাদের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো| প্রভুকে জিজ্ঞেস করো কি ঘটতে চলেছে| আমরা জানতে চাই কারণ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর আমাদের আক্রমণ করেছে| হয়তো প্রভু আমাদের জন্য অতীতে য়েমন করেছিলেন তেমনি চমত্কার ও শক্তিশালী জিনিষগুলি তিনি করবেন| প্রভুই হয়তো নবূখদ্রিত্সরকে আমাদের প্রতি আক্রমণ থেকে বিরত করবেন|” 3 তখন যিরমিয়, পশ্হূর এবং সফনিয়কে উত্তরে বলল, “রাজা সিদিকিয়কে বলো: 4 প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল: ‘তোমার অস্ত্র সম্ভার আছে| এবং সেই অস্ত্র সম্ভার দিয়ে তুমি বাবিলের রাজা এবং বাবিলবাসীদের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করেছো| কিন্তু আমি তোমার সমস্ত অস্ত্র সম্ভার নষ্ট করে দেব| ওগুলো আর কোন কাজেই লাগবে না|“‘বাবিলের রাজার সৈন্যরা শহর ঘিরে ফেলছে| শীঘ্রই আমি তাদের জেরুশালেমের অভ্য়ন্তরে নিয়ে আসব| 5 বয়ং আমি তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব| যিহূদার লোকেদের, আমি আমার শক্তিশালী এই হাত দিয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব| আমি তোমাদের ওপর প্রচণ্ড রুদ্ধ এবং আমি কতখানি রুদ্ধ তা বোঝানোর জন্যই আমি তোমাদের বিরুদ্ধে কঠিন যুদ্ধ করব| 6 আমি সমস্ত জেরুশালেমবাসীকে হত্যা করব| হত্যা করব পশুদেরও| তারা একটি ভয়ঙ্কর রোগে মারা যাবে য়েটি সারা শহরে ছড়িয়ে যাবে|”‘ 7 ঐটি ঘটবার পর, এই হল প্রভুর বার্তা, “‘আমি বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের হাতে যিহূদার রাজা সিদিকিয় ও তার মন্ত্রী মণ্ডলীকে তুলে দেব| জেরুশালেমে যারা মহামারী, যুদ্ধ এবং অনাহারের পরও জীবিত থাকবে তাদেরও আমি তুলে দেব নবূখদ্রিত্সরের হাতে| রাজা নবূখদ্রিত্সরের সেনাবাহিনী যিহূদার লোককে হত্যা করতে চাইবে| তাই যিহূদা এবং জেরুশালেমের লোক মারা যাবে তরবারির আঘাতে| নবূখদ্রিত্সর অবশ্য কোন দযা দেখাবে না| সে ঐ লোকদের জন্য কোন রকম দুঃখও অনুভব করবে না|’ 8 “জেরুশালেমের লোককে এটাও বলে দাও| প্রভু এই কথাগুলি বললেন: ‘আমি তোমাদের জীবন এবং মৃত্যুর মধ্যে বাছতে দেব| 9 জেরুশালেমে যারা বাস করে তারা মরবে| তারা মারা যাবে তরবারির আঘাতে, নাহলে মহামারীতে নয়তো অনাহারে| কিন্তু কেউ যদি জেরুশালেম থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাবিল সৈন্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করে তাহলে সে বেঁচে যাবে| পুরো শহরটাই বাবিলীয সৈন্য ঘিরে রেখেছে| কেউ বাইরে য়েতে পারবে না এবং শহরের ভেতর খাবার আনতে পারবে না| কিন্তু কেউ যদি বাইরে যায় এবং বাবিলের সৈন্যের কাছে আত্মসমর্পণ করে, সে তার জীবন রক্ষা করবে| 10 আমি ঠিক করেছি জেরুশালেম শহরকে বিপদে জর্জরিত করে দেব কিন্তু কোন সাহায্য করব না|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা ‘আমি জেরুশালেম শহর বাবিলের রাজাকে দিয়ে দেব| সে এই শহরে আগুন লাগিয়ে দেবে|” 11 “এই বার্তা যিহূদার রাজপরিবারকে জানিয়ে দাও: প্রভুর বার্তা শোন| 12 দাযূদ পরিবার, প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ‘তুমি প্রতিদিন লোকদের ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে বিচার করবে| অভিযুক্তদের অপরাধীদের হাত থেকে বাঁচাবে| যদি তুমি তা না করো তাহলে আমি রুদ্ধ হব| আমার রোধ হল আগুনের মতো| একবার সেই রোধর আগুন জ্বললে কেউ আর তা নেভাতে পারবে না| এটি ঘটবে কারণ তোমরা পাপ কাজ করেছিলে|’ 13 “জেরুশালেম, আমি তোমার বিরুদ্ধে| তুমি পাহাড়ের চূড়ায় বসে থাকো| তুমি এই উপত্যকার ওপর রাণীর মত বসে থাকো| জেরুশালেমের লোকরা তোমরা বলছো, ‘কেউ আমাদের আক্রমণ করতে পারে না| কেউ আমাদের এই দূর্গসমন্বিত শহরগুলিতে প্রবেশ করতে পারে না|’ কিন্তু প্রভুর এই বার্তা শোন| 14 ‘তুমি য়োগ্য শাস্তি পাবে| আমি তোমার অরণ্যে আগুন লাগাবো| সেই আগুন তোমার চারিদিকের সব কিছু পুড়িয়ে দেবে|”‘
1 প্রভু বললেন: “যিরমিয়, রাজপ্রাসাদে যাও| যিহূদার রাজার কাছে গিয়ে এই ধর্মোপদেশ প্রচার করো: 2 ‘যিহূদার রাজা, প্রভুর বার্তা শোন| তুমি দাযূদের সিংহাসন থেকে শাসন করছ, তাই শোন হে রাজা, তুমি এবং তোমার সভা পরিষদগণও শোন| জেরুশালেমের ফটক দিয়ে আসা তোমার লোকদেরও ঈশ্বরের বার্তা শুনতে হবে| 3 প্রভু বললেন: যা ঠিক তাই করো| ডাকাতকে নয়, যার ডাকাতি হয়েছে তাকে রক্ষা করো| বিধ্বা মহিলাদের এবং অনাথ শিশুদের কোন ক্ষতি করো না| নিরীহ লোকদের মেরো না| 4 যদি এই নির্দেশগুলো তোমরা মেনে চলো তাহলে এগুলি ঘটবে: দাযূদের সিংহাসনে য়ে সব রাজারা অধিষ্ঠিত রয়েছে তারা জেরুশালেম শহরের ফটক দিয়ে আসা চালিযে যাবে| সঙ্গে থাকবে তাদের সভা পরিষদগণ| তারা সবাই রথে ঘোড়ায় চড়ে আসবে| 5 কিন্তু যদি এই নির্দেশগুলি মানা না হয়, তাহলে প্রভু বলেছেন: আমি, প্রভু, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি রাজার প্রাসাদ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং সব কিছু জঞ্জালের স্তূপে পরিণত হবে|”‘ 6 যিহূদার রাজার রাজপ্রাসাদের সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল:“এই প্রাসাদ হল গিলিয়দের অরণ্যের মতো উচ্চ| এই রাজপ্রাসাদ হল লিবানোনের পর্বতের মতো উচ্চ, কিন্তু এই প্রাসাদকে মরুভূমিতে পরিণত করব| এই প্রাসাদ নির্জন শহরের মতো একাকি দাঁড়িয়ে থাকবে| 7 আমি ধ্বংসকারীদের এই প্রাসাদ ধ্বংস করতে পাঠাব| তারা প্রাসাদের সুদৃশ্য এরস কড়িকাঠগুলো কেটে ফেলবে এবং সেগুলোতে আগুন ধরিযে দেবে| 8 “অনেক জাতির লোকরা এই শহরের পাশ দিয়ে য়েতে য়েতে একে অন্যকে প্রশ্ন করবে, ‘মহান শহর জেরুশালেমের ওপর প্রভু এমন একটা সাংঘাতিক কাণ্ড কেন করলেন?’ 9 এই হবে তাদের প্রশ্োনর উত্তর: যিহূদার লোকরা তাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে য়ে চুক্তি হয়েছিল তা তারা অমান্য করেছিল বলে ঈশ্বর জেরুশালেমকে ধ্বংস করেছেন| যিহূদার লোকরা মূর্ত্তি পূজা করেছিল বলে তাদের এই ভযানক ফল ভোগ করতে হল|”‘ 10 মৃত রাজাদের জন্য না কেঁদে বরং য়ে রাজাকে এই জায়গা ছেড়ে চলে য়েতে হবে তার জন্য কাঁদো| কারণ সে আর কখনো ফিরে আসবে না| আর কোন দিন সে নিজের মাতৃভূমিকে দেখতে পাবে না| 11 য়োশিযের পুত্র শল্লুম (য়েহোযাজ) সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল, (য়োশিয মারা যাবার পর তার পুত্র শল্লুম যিহূদার রাজা হয়েছিল|) “য়েহোযাজ জেরুশালেম ছেড়ে চলে গিয়েছিল| সে আর কোন দিন জেরুশালেমে ফিরে আসে নি| 12 মিশরের লোকেরা তাকে যেখানে ধরে নিয়ে গিয়েছে সেখানেই তার মৃত্যু হবে| সে আর কোনদিন এই দেশকে দেখতে পাবে না|” 13 রাজা যিহোয়াকীমের জীবনে খারাপ সময় ঘনিয়ে আসছে| সে তার রাজপ্রাসাদ তৈরী করতে বহু অসত্ কাজ করেছে| লোক ঠকিয়ে প্রাসাদের ঘর সমেত উচ্চতা বাড়িয়েছে| তার প্রজাদের দিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে সে কাজ করিযে নিয়েছে| 14 যিহোয়াকীম বলল, “আমি নিজের জন্য একটি বিশাল প্রাসাদ তৈরী করব| সেই প্রাসাদের ওপরের তলায় বড় বড় ঘর থাকবে|” তাই সে বড় বড় জানালা তৈরী করল| এরস বৃক্ষের কাঠ দিয়ে তৈরী জানালার চারিদিকে সে লাল রঙ করল| 15 যিহোয়াকীম, তোমার প্রাসাদে অসংখ্য এরস বৃক্ষের কাঠ তোমাকে মহান রাজা করে দিতে পারবে না| তোমার পিতা য়োশিয খাদ্য ও পানীয় পেয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন| তিনি সঠিক পথে সঠিক কাজ করেছিলেন| অতএব তাঁর ক্ষেত্রে সব কিছুই ভালো হয়েছিল| 16 য়োশিয গরীব দুঃখী লোকদের পাশে দাঁড়িয়েছিল বলে তার সঙ্গে খারাপ কোন ঘটনা ঘটেনি| যিহোয়াকীম, ‘ঈশ্বরকে জানার অর্থ সত্ভাবে জীবনযাপন করা এবং যারা গরীব ও আর্ত্ত তাদের সাহায্য করা|’ এই হল প্রভুর বার্তা: 17 যিহোয়াকীম, তোমার চোখ দুটো শুধু তোমার লাভের দিকটাই দেখে| তোমার সমস্ত ভাবনা হল লাভ নিয়ে এবং কি করে আরো বেশী কিছু পাবে তাই নিয়ে| তুমি ইচ্ছা করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছো| স্বেচ্ছায় অন্যের জিনিস চুরি করেছো| 18 সুতরাং য়োশিযর পুত্র যিহোয়াকীমকে প্রভু এই কথাগুলি বললেন: “যিহূদার লোকেরা কখনও যিহোয়াকীমের জন্য কাঁদবে না| তারা একে অপরকে বলবে না; ‘হে আমার ভাই, আমি যিহোয়াকীমের জন্য খুব দুঃখিত! হে আমার ভগিনী, আমি যিহোয়াকীমের জন্য খুব দুঃখিত!’ তারা যিহোয়াকীমের জন্য দুঃখিত হবে না| তারা তার সম্বন্ধে বলবে না, ‘হে মনিব, আমরা দুঃখিত! হে রাজা আমরা মর্মাহত!’ 19 জেরুশালেমের লোকরা যিহোয়াকীমকে কবর দেবে একটি মৃত গাধার সত্কারের ভঙ্গিতে| তারা তার মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে জেরুশালেমের ফটকের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেবে| 20 “যিহূদা, যাও লিবানোনের পাহাড়ে উঠে চিত্কার করে কাঁদো যাতে তোমাদের সেই কান্নার রোল বসনের পাহাড় থেকে শোনা যায়| অবারীম পাহাড় থেকে চেঁচিয়ে ওঠো| কারণ তোমার ‘প্রেমিকরা’ সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে| 21 “যিহূদা, তুমি নিজেকে নিরাপদ মনে করেছিলে কিন্তু আমি তোমাকে সতর্ক করেছিলাম! তোমায় সতর্ক করেছিলাম কিন্তু আমার কথা শোননি| ছেলেমানুষ ছিলে বলে তুমি ভুলপথে জীবনযাপন করেছিলে| যিহূদা, তুমি তোমার য়ৌবনকাল থেকে আমাকে অমান্য করেছ| 22 যিহূদা আমি তোমাকে য়ে শাস্তি দেব তা আসবে ঝড়ের মতো এবং সেই ঝড় তোমার সমস্ত মেষপালকদের উড়িযে নিয়ে যাবে| তুমি ভেবেছিলে অন্যান্য জাতিগুলি তোমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে, কিন্তু তারাও পরাজিত হবে| তখন তুমি সত্যি সত্যি নিরাশ হয়ে পড়বে| লজ্জিত হবে নিজের অতীতের কৃতকর্মের কথা ভেবে|” 23 “রাজা, তুমি পাহাড়ের একেবারে ওপরে এরস বৃক্ষের তৈরী সুদৃশ্য প্রাসাদে বাস করো| এটা অনেকটা তোমার কাছে লিবানোনে বাস করার মতোই য়েখান থেকে ঐ কাঠ আসে| য়েহেতু পাহাড়ের ওপর বিশাল প্রাসাদে তুমি বাস করো তাই তুমি নিজেকে নিরাপদ ভাবছো| কিন্তু যখন শাস্তি তোমার কাছে আসবে তখন তুমি আঘাত পাবে এবং প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মহিলার মত আর্তনাদ করবে|” 24 প্রভু বললেন, “আমি আছি এটা য়েমন নিশ্চিত্,” এই হল প্রভুর বার্তা, “তেমনি ভাবে আমি এটা করব| যিহোয়াকীমের পুত্র যিহোয়াকীণ, যিহূদার রাজা, তুমি যদি আমার ডান হাতের মোহর করা আংটিওহও, আমি তোমাক ছুঁড়ে ফেলে দেব| 25 যিহূদারাজ কনিয, তুমি যাদের ভয়ে ভীত সেই বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের ও বাবিলের লোকদের হাতে আমি তোমাকে তুলে দেব| তারা তোমাকে হত্যা করতে চায়| 26 আমি তোমাকে ও তোমার মাকে এমন এক দেশে পাঠিয়ে দেব য়েটা তোমাদের কারোরই জন্মস্থান নয়| তোমরা সেখানে মারা যাবে| 27 যিহোয়াকীণ তুমি যদি স্বদেশ কাতর হয়ে যাও এবং তোমার নিজের দেশে ফিরেও য়েতে ইচ্ছা কর, তুমি কখনও ফিরে যাবার অনুমতি পাবে না|” 28 কনিয হল এক ভাঙ্গা পাত্রের মত যাকে কোন মানুষ বাতিল করে ফেলে দিয়েছে| সে এমনই এক পাত্র যাকে কেউ চায় না| যিহোয়াকীণ ও তার সন্তানদের কেন ফেলে দেওয়া হবে? কেন তাদের অন্য দেশে নিক্ষিপ্ত করা হবে? 29 ভূমি, যিহূদার দেশ, প্রভুর বার্তা শোন| 30 প্রভু বললেন, “কনিয সম্বন্ধে এই কথাগুলো লিখে নাও| ‘সে হবে এমনই এক মানুষ যার আর কোন সন্তান থাকবে না| সে কখনো জীবনে সফল হবে না| তার কোন সন্তান কখনো দাযূদের সিংহাসনে বসতে পারবে না| তার কোন সন্তান কখনো যিহূদার রাজত্ব করবে না|”‘
1 “যিহূদার মেষপালকদেরপক্ষে এটা খারাপ হবে| এই মেষপালকরা আমার মেষদের আহত করছে| তারা চারদিক থেকে এই মেষদের তাড়িয়ে আমার শস্যের কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 2 এই মেষপালকরা (নেতৃবৃন্দ) আমার মেষদের (লোকদের) জন্য দাযী এবং প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর ঐ মেষপালকদের বললেন: “তোমরা মেষপালকরা আমার মেষদের চতুর্দিকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছ| এবং তোমরা তার রক্ষণাবেক্ষণ করনি| কিন্তু আমি তোমাদের দেখে নেব| তোমাদের মন্দ কাজের জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 3 “আমি আমার মেষদের অন্য দেশে পাঠিয়ে দেব| তারপর ঐ বিদেশগুলোর থেকে আমি আমার বাকী মেষগুলিকে জড়ো করব এবং য়ে সমস্ত মেষরা পড়ে থাকবে, তাদের আমি একত্রিত করে তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনব| তারা যখন স্বদেশে ফিরবে তখন তাদের সন্তানরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে| 4 আমি তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নতুন মেষপালক রাখব এবং তাহলে আমার কোন মেষই ভয় পাবে নাবা হারিযে যাবে না|” এই হল প্রভুর বার্তা| 5 প্রভু এই বার্তা বলেন, “সেই সময় আসছে যখন আমি একটি ভালো ‘নবোদগম’|উত্তোলন করব| সে বুদ্ধিমত্ত্বার সঙ্গে শাসন করবে এবং দেশে যা ন্যায্য এবং ঠিক তাই করবে| সে সুষ্ঠু ভাবে দেশ শাসন করবে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে| 6 তার রাজত্বের সময়, যিহূদা রক্ষা পাবে এবং ইস্রায়েল নিরাপদে থাকবে| এই হবে তার নাম: প্রভুই আমাদের ধার্মিকতা|” 7 “সেই সময় আসছে,” এই হল প্রভুর বার্তা, “যখন লোকরা আর প্রভুর পুরানো প্রতিশ্রুতির কথা বলবে না| পুরানো প্রতিশ্রুতি হল: ‘য়েহেতু প্রভুর অস্তিত্ব নিশ্চিত, প্রভু তিনিই, যিনি সমস্ত ইস্রায়েলবাসীকে মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলেন|’ 8 কিন্তু লোকরা এখন নতুন কথা বলবে| তারা বলবে, ‘প্রভুর অস্তিত্ব য়েমন নিশ্চিত, তিনিই হলেন সেই একজন যিনি সমস্ত ইস্রায়েলের লোকদের উত্তরদেশ থেকে বের করে এনেছিলেন| তিনি তাদের য়ে সব দেশে পাঠিয়েছিলেন, সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলেন|’ তখন থেকে ইস্রায়েলবাসী তাদের নিজেদের দেশে বসবাস শুরু করল|” 9 ভাব্বাদীদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা: আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে| প্রভু যা বলেছেন তাতে ভয়ে আমার হাড়ে পর্য়ন্ত কাঁপুনি ধরেছে| প্রভুর পবিত্র বার্তাটির দরুণ আমি এক জন বদ্ধ মাতালের মত বলছি| 10 যিহূদার মাটি ব্যাভিচারীদের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ভরে গেছে| তারা নানা বিষয়ে অবিশ্বস্ত| প্রভুর অভিশাপে এই দেশের মাটি শুষ্ক হয়ে যাবে| শুকিয়ে যাবে গাছের পাতা| শুকিয়ে যাবে পশুচারণের তৃণভূমি| শস্যভূমি শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাবে| ভাব্বাদীরা হোল শযতান| তারা তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতা ভুল ভাবে ব্যবহার করেছিল| 11 “ভাব্বাদীরা তো বটেই, এমন কি যাজকরাও শযতান| আমি তাদের আমার মন্দিরে খারাপ কাজ করতে দেখেছি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 12 “আমি যদি ভাব্বাদীদের এবং যাজকদের আমার বার্তা দেওয়া বন্ধ করি, তাহলে তাদের পিচ্ছিল পথে, অন্ধকারের মধ্যে হাঁটতে হবে| তারা ঐ অন্ধকারে পড়ে যাবে| আমি তাদের ওপর দুর্বিপাক আনব| আমি শাস্তি দেব ঐ সমস্ত ভাব্বাদী ও যাজকদের|” এই হল প্রভুর বার্তা| 13 “শমরিয়ার ভাব্বাদীদের অন্যায় করতে দেখেছি| আমি ঐ ভাব্বাদীদের বাল মূর্ত্তির নামে ভাব্বাণী করতে দেখেছি| ঐ ভাব্বাদীরা মিথ্যা শিক্ষা দিয়ে ইস্রায়েলবাসীকে প্রভুর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল| 14 এখন দেখছি যিহূদার ভাব্বাদীরা সেই সব গর্হিত কাজগুলি জেরুশালেমে করছে| এই ভাব্বাদীরা পাপ ও ব্যভিচার করে বেড়াচ্ছে| তারা মিথ্য়েকেই প্রশয দিয়ে এসেছে এবং তারা ভুল শিক্ষাগুলিকে পালন করেছিল| অসত্ লোকদের তারা একটা না একটা গর্হিত কাজ করার ব্যাপারে উত্সাহ দিয়ে এসেছে| তাই যিহূদার মানুষ সদোমের মানুষের মতো পাপ থেকে বিরত থাকেনি| এখন জেরুশালেম আমার কাছে ঘমোরার মতো|” 15 সুতরাং প্রভু সর্বশক্তিমান ভাব্বাদীদের সম্বন্ধে যা বলেন তা হল এই: “আমি ঐ ভাব্বাদীদের শাস্তি দেব| বিষাক্ত খাদ্য ও জল পান করার মতো শাস্তি দেব| ভাব্বাদীরা আত্মিক অসুখে ভুগতে শুরু করেছিল এবং সেই অসুখ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল| তাই আমি ঐ ভাব্বাদীদের শাস্তি দেব| ঐ অসুখ ভাব্বাদীদের মাধ্যমে জেরুশালেমে এসেছিল|” 16 সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেন: “ভাব্বাদীরা যা বলেছে তার দিকে তোমরা মন দিও না| তারা তোমাদের বোকা বানাতে চাইছে| ঐ ভাব্বাদীরা স্বপ্নদর্শন সম্বন্ধে কথা বলছে| কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে কোন স্বপ্নাদেশ পায় নি| ঐ স্বপ্নদর্শনগুলো তাদের নিজেদের মনের স্বপ্নদর্শন| 17 কিছু লোক প্রভুর সত্য বার্তাকে ঘৃণা করে তাই ভাব্বাদীরা ঐ লোকদের ভুল বার্তা দেয়| তারা বলে, ‘তোমরা শান্তিতে বিরাজ করবে|’ কিছু মানুষ ভীষণ একগুঁযে, জেদী| তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করে| তাই সেই সুযোগ নিয়ে ভাব্বাদীরা ঐ জেদী লোকদের বলল তোমাদের সঙ্গে খারাপ কোন ঘটনা ঘটবে না!’ 18 কিন্তু ঐ ভাব্বাদীদের কেউই স্বর্গীয সভায দাঁড়াযনি| তাদের কেউই প্রভুকে দেখেনি বা প্রভুর বার্তা শোনেনি| 19 এখন প্রভুর কাছ থেকে ঝড়ের মতো শাস্তি আসবে| প্রভুর রোধ হল ঘূর্ণিঝড়| সেই ঝড় অসত্ লোকেদের মাথার ওপর হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়বে| 20 পরিকল্পনা মাফিক কাজ শেষ না করে প্রভু তার রোধ প্রশমিত করবেন না| সেই দিনটি যখন আসবে তখন তোমরা পরিষ্কার ভাবে এটি বুঝতে পারবে| 21 আমি ঐ ভাব্বাদীদের পাঠাইনি| অথচ তারা দৌড়ে বেড়ালো নিজেদের তৈরী বার্তা নিয়ে| আমি তাদের সঙ্গে কথা বলিনি| অথচ তারা আমার নাম করে প্রচার করেছিল তাদের ভ্রান্ত ধর্মোপদেশ| 22 তারা যদি আমার স্বর্গীয সভায দাঁড়াতো, তাহলে তারা আমার বার্তা যিহূদার লোকদের কাছে প্রচার করতে পারতো| তারা পারত মানুষকে খারাপ কাজ করার থেকে বিরত করতে| তারা পারত মানুষকে অসত্ হওয়া থেকে বিরত করতে|” 23 “আমিই ঈশ্বর| আমি বহুদূরে নয়, খুব কাছেই আছি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 24 কেউ গোপন জায়গায় লুকিয়ে থাকলেও আমি কিন্তু সহজেই তাকে দেখতে পাই| কেন? কারণ আমি স্বর্গ এবং মর্ত্য সর্বত্র বিরাজমান” প্রভু একথা বলেছেন| 25 “ঐ ভাব্বাদীরা আমার নাম দিয়ে মিথ্য়ে ধর্মোপদেশ প্রচার করেছে| তারা বলেছে, ‘আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি! আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি!’ আমি তাদের ঐ কথাগুলো বলতে শুনেছি| 26 আর কতদিন এভাবে চলবে? ঐ ভাব্বাদীরা মিথ্যা রচনা করে এবং লোকদের মিথ্যা শিক্ষা দেয়| 27 ঐ ভাব্বাদীরা চেষ্টা করল যাতে যিহূদার লোকরা আমার নাম ভুলে যায়| তারা তাদের মিথ্য়ে স্বপ্নাদেশের কথা বলে বেড়াতে লাগল| য়ে ভাবে তাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ভুলে গিয়েছিল, সেই ভাবে তারা আমার লোকদের আমাকে ভুলে যাওয়াতে চেষ্টা করছে| তাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ভুলে ভ্রান্ত দেবতার পূজা করেছিল| 28 খড় আর গম য়েমন এক জিনিস নয়, তেমনি ভাব্বাদীদের স্বপ্নাদেশ আর আমার বার্তাও এক নয়| কেউ যদি নিজেদের দেখা স্বপ্নকে বলে বেড়াতে চায় তা সে বলুক| কিন্তু এজন লোক যদি আমার বার্তা শোনে, তাকে সে কথা সত্যি করে বলতে হবে| 29 আমার বার্তা হল আগুনের মতো|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমার বার্তা হল পাথরে আছড়ে পড়া হাতুড়ি, যা পাথরকেও গুঁড়িযে দেয়| 30 “সুতরাং আমি ঐ কপট ভাব্বাদীদের বিরুদ্ধে|” ঐ ভাব্বাদীরা একে অন্যের কাছ থেকে আমার বাণীসমূহ চুরি করে চলেছে| এই হল প্রভুর বার্তা| 31 “আমি মিথ্যা ভাব্বাদীদের বিরুদ্ধে|” এই হল প্রভুর বার্তা, “তাদের নিজেদের কথাগুলোকে আমার বার্তা বলে তারা লোক ঠকাচ্ছে|” 32 আমি ঐ কপট ভাব্বাদী এবং তাদের মিথ্য়ে স্বপ্ন ও মিথ্য়ে ধর্মোপদেশ প্রচারের বিরুদ্ধে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তারা তাদের মিথ্য়ে ছলনা ও ভ্রান্ত শিক্ষা দিয়ে আমার লোকদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে| আমি ঐ ভাব্বাদীদের লোককে শিক্ষা দিতে পাঠাই নি| আমি তাদের আমার জন্য কিছু করার নির্দেশ দিইনি| তারা যিহূদার লোকদের কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারবে না|” এই হল প্রভুর বার্তা| 33 “যিহূদার লোকরা ভাব্বাদী অথবা কোন যাজক হয়তো তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘যিরমিয়, প্রভুর ঘোষণা কি?’ তুমি ওদের উত্তরে বলবে, ‘তোমরা হলে প্রভুর কাছে ভারী বোঝা এবং আমি ঐ ভারী বোঝা ছুঁড়ে ফেলব|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 34 “কোন ভাব্বাদী, কোন যাজক অথবা কোন এক জন সাধারণ লোক হয়তো বলতে পারে, ‘এই হল প্রভুর ঘোষণা|’ য়ে একথা বলবে সে মিথ্য়েবাদী এবং আমি তাকে ও তার পরিবারকে শাস্তি দেব| 35 তোমরা একে অপরকে বলবে: ‘প্রভু কি উত্তর দিলেন?’ অথবা ‘প্রভু কি বললেন?’ 36 কিন্তু তোমরা আর কখনও এই অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করবে না: ‘প্রভুর ঘোষণা (ভারী বোঝা|)’ একথা খবরদার উচ্চারণ কোরো না কারণ প্রভুর ঘোষণা কখনও কারও ক্ষেত্রে ভারী বোঝা হয় না| কিন্তু তোমরা আমাদের ঈশ্বরের কথায় পরিবর্তন ঘটিযেছ| তিনি জীবন্ত ঈশ্বর, তিনি প্রভু সর্বশক্তিমান| 37 “তোমরা যদি ঈশ্বরের বার্তা জানতে চাও তাহলে কোন ভাব্বাদীকে জিজ্ঞেস করো| ‘প্রভু আপনাকে কি উত্তর দিয়েছেন?’ অথবা ‘প্রভু কি বলেছেন?’ 38 কিন্তু একথা বলো না, ‘প্রভুর ঘোষণা (ভারী বোঝা) কি ছিল?’ যদি তোমরা আবার এই কথার পুনরাবৃত্তি করো তাহলে প্রভু তোমাদের উদ্দেশ্যে এগুলি বলবেন: ‘তোমরা আমার বার্তাকে ভারী বোঝা বলে উল্লেখ করবে না|’ আমি তোমাদের এই শব্দ ব্যবহার করতে বারণ করছি| 39 কিন্তু তোমরা যদি আমার বার্তাকে ভারী বোঝা বলে উল্লেখ করো তাহলে আমিও তোমাদের এবং ঐ শহরটিকে ভারী বোঝা বলে মনে করে আমার কাছ থেকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেব| আমি তোমাদের পূর্বপুরুষকে এই জেরুশালেম শহর দিয়েছিলাম| কিন্তু আমি তোমাদের এই শহর থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেব| 40 আমি তোমাদের চির কালের জন্য অপদস্থ করব এবং তোমরা কোন দিন তোমাদের বিব্রত অবস্থাকে ভুলতে পারবে না|”‘
1 প্রভু আমাকে এই জিনিসগুলি দেখিয়ে ছিলেন: আমি ডুমুর ভর্ত্তি দুটি ঝুড়ি দেখেছিলাম প্রভুর মন্দিরের সামনে রাখা আছে| বাবিলের নবূখদ্রিত্সর যখন য়িকনিযকে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে ছিলেন তখন আমার এই স্বপ্নদর্শন হয়েছিল| রাজা যিহোয়াকীমের পুত্র য়িকনিয ও তার গুরুত্বপূর্ণ সভাসদবৃন্দদের জেরুশালেম থেকে গ্রেপ্তার করে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| যিহূদার সমস্ত ছুতোর ও কানাদেরও নবূখদ্রিত্সর বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন| 2 একটা ঝুড়িতে ছিল খুব ভাল ডুমুর| ঐ ডুমুরগুলি ছিল মরশুমের শুরুতে পাকা ডুমুর| কিন্তু অপর ঝুড়িতে ছিল পচা ডুমুর| যা একেবারেই খাওয়ার অয়োগ্য| 3 প্রভু আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “যিরমিয়, তুমি কি দেখতে পাচ্ছ?” আমি উত্তর দিয়েছিলাম, “আমি ডুমুর দেখতে পাচ্ছি| ভাল ডুমুরগুলো খুবই ভাল| আর পচা ডুমুরগুলো এতোই পচা য়ে ওগুলো খাওয়া যাবে না|” 4 তারপর আমি প্রভুর কাছ থেকে বার্তা পেয়েছিলাম| 5 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাকে বলেছিলেন: “যিহূদার লোকদের তাদের দেশ থেকে শএুরা বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল| সেই লোকগুলি হবে ঐ ভাল ডুমুরগুলোর মতো| এদের প্রতি আমি দযালু হবো| 6 আমি তাদের রক্ষা করব| আমি তাদের যিহূদায় ফিরিয়ে আনব| আমি তাদের ছিন্নভিন্ন না করে গড়ে তুলব| আমি তাদের উদ্ধার করবো| আমি তাদের প্রতিষ্ঠা করবো| যাতে তারা বেড়ে উঠতে পারে| 7 আমি তাদের একটি হৃদয় দেব য়েটা আমাকে জানতে ইচ্ছা করবে| তখন তারা জানবে য়ে আমিই প্রভু| তারা হবে আমার লোক| আমি হব তাদের ঈশ্বর| আমি এটা করবো কারণ বাবিলের বন্দীরা সম্পূর্ণ ভাবে তাদের হৃদয় আমার কাছে সমর্পণ করবে| 8 “কিন্তু যিহূদার রাজা সিদিকিয় হবে ঐ খাওয়ার অয়োগ্য পচা ডুমুরগুলির মতো| সিদিকিয়র উচ্চপদস্থ পারিষদগণ, জেরুশালেমে পড়ে থাকা সমস্ত লোক ও মিশরে বসবাসকারী যিহূদার লোকরা হবে ঐ পচা ডুমুরের মতো| 9 “আমি ঐ লোকদের এমন একটি শাস্তি দেব য়েটা পৃথিবীর সমস্ত লোককে বিস্মযাভিভূত করবে| যিহূদার ঐ সব লোকেরা হবে অন্যদের উপহাসের সামগ্রী| আমি তাদের যেখানেই ছড়িয়ে দেব সেখানকার লোকরা তাদের শাপ দেবে| 10 তাদের বিরোধিতা করার জন্য আমি তরবারি, অনাহার এবং রোগ পাঠাব| আমি তাদের যতক্ষণ পর্য়ন্ত না প্রত্যেকে মারা যায় ততক্ষণ আক্রমণ করব| তাহলে তারা এই দেশ যা আমি তাদের এবং তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম সেখান থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে|”
1 যিহূদার লোকদের সম্বন্ধে যিরমিয়র কাছে এই বার্তা এসেছিল| যিহূদার রাজা হিসাবে যিহোয়াকীমের রাজত্ব কালের চতুর্থতম বছরে এই বার্তা এসেছিল| য়োশিযের পুত্র যিহূদা রাজ যিহোয়াকীমের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছর ছিল বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের রাজত্ব কালের প্রথম বছর| 2 এই বার্তা ভাব্বাদী যিরমিয়, যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত মানুষকে শুনিয়েছিল: 3 বিগত 23 বছর ধরে আমি বার বার তোমাদের কাছে প্রভুর বাণী দিয়ে এসেছি| আমোনের পুত্র য়োশিয যিহূদার রাজা হবার ত্রযোদশ বছর থেকে আমি এক জন ভাব্বাদী| আমার ভাব্বাদী প্রাপ্তির সময় যিহূদার রাজা ছিলেন আমোনের পুত্র য়োশিয| সেই সময় থেকে আজ পর্য়ন্ত আমি তোমাদের কাছে প্রভুর বার্তা প্রচার করে আসছি| কিন্তু তোমরা কেউ তা শোননি| 4 প্রভু তার ভৃত্যদের ও ভাব্বাদীদের বার বার পাঠানো সত্ত্বেও, তোমরা, তারা কি বলেছিল তা শোননি এবং তাদের দিকে মনোয়োগ দাওনি| 5 এই ভাব্বাদীরা বলেছিল, “তোমাদের জীবনযাত্রা বদলাও এবং খারাপ কাজ করা বন্ধ করো! নিজেদের জীবনযাত্রা পালটালে তবে তোমরা প্রভুর দেশে ফিরতে পারবে য়েটা প্রভুর দ্বারা বহু কাল আগে তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেওয়া হয়েছিল এবং চির কালের জন্য এখানে থাকতে দেওয়া হয়েছিল| 6 অন্য দেবতাদের অনুসরণ কোরো না| মানুষের তৈরী মূর্ত্তিগুলোর পূজো অথবা সেবা কোরো না| যদি তা করো তাহলে আমি রুদ্ধ হব| আর আমার রোধ তোমাদেরই ক্ষতি করবে|” 7 “কিন্তু তোমরা আমার কথা শোন নি|” ঐ মূর্ত্তিদের পূজা করে তোমরা আমাকে রুদ্ধ করেছ এবং সেটা তোমাদেরই ক্ষতি করেছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 8 প্রভু সর্বশক্তিমান যা বলেন তা হল, “তোমরা আমার কথাগুলো শোননি| 9 তাই শীঘ্রই উত্তরের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে এবং বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে যিহূদার লোকদের বিরুদ্ধে পাঠাব| নবূখদ্রিত্সর হল আমার অনুচর| আমি তাদের যিহূদার চার পাশের সমস্ত জাতির বিরুদ্ধে আনব| আমি যিহূদা ও তার চারপাশের সমস্ত দেশগুলিকে ধ্বংস করব এবং তাদের একটি চিরকালীন শূন্য মরুভূমিতে পরিণত করব| মানুষ শিস দিতে দিতে দেখবে কি ভাবে সেই সব দেশ ধ্বংস হবে| 10 ঐ দেশগুলিতে আর কোন আনন্দমুখর ধ্বনির উত্পত্তি হবে না| বিয়ের সানাই বেজে উঠবে না| শস্যদানা পেষাইযের কোন আওয়াজ থাকবে না| আমি রাতে সমস্ত বাতিগুলোর আলো কেড়ে নেব| 11 পুরো এলাকাটি ধ্বংস হয়ে যাবে এবং একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে| আর সমস্ত মানুষ আগামী 70 বছরের জন্য বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের দাসত্ব করবে| 12 “কিন্তু 70 বছর পূর্ণ হবার পর বাবিলের রাজাকেও আমি শাস্তি দেব| শাস্তি দেব সমগ্র বাবিলবাসীকে তাদের পাপের জন্য|” এই হল প্রভুর বার্তা | “বাবিলও শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে| 13 যিরমিয়র ভাব্বাণীর মাধ্যমে আমি ঐ বিদেশগুলির সম্বন্ধে য়েসব খারাপ ঘটনা ঘটবে বলে আগে বলেছিলাম সেইগুলো সত্য হবে| এই বইয়ে ঐ সমস্ত সতর্কবাণী লেখা আছে| এবং এই বইয়ে য়ে সমস্ত সতর্কবাণী লেখা আছে সেগুলোও প্রচার করো| 14 হ্যাঁ, বাবিলের লোকদের বহু জাতিদের এবং মহত্ রাজাদের সেবা করতে হবে| তাদের কৃতকার্য়ের য়োগ্য শাস্তি আমি দেব|” 15 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাকে এই কথাগুলি বললেন: “যিরমিয়, আমার হাত থেকে এই পেয়ালা ভর্তি দ্রাক্ষারস নাও| এই দ্রাক্ষারস হল আমার রোধ| আমি তোমাকে অন্য জাতিদের কাছে পাঠাচ্ছি| অন্যান্য দেশগুলিকে এই পেয়ালা থেকে চুমুক দেওয়াও| 16 তারা এই দ্রাক্ষারস পান করবে| তারা বমি করবে| পাগলের মতো আচরণ করবে| তারা এরকম ব্যবহার করবে কারণ আমি শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে তরবারিটি পাঠাব|” 17 সুতরাং আমি প্রভুর হাত থেকে দ্রাক্ষা ভর্তি পেয়ালা তুলে নিলাম| আমি সেই সমস্ত দেশে গেলাম এবং তাদের সেই পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করালাম| 18 আমি জেরুশালেম এবং যিহূদার লোকদের জন্য এই দ্রাক্ষারস ঢেলে দিলাম| আমি যিহূদার রাজা এবং তার নেতাদের এই দ্রাক্ষারস পান করালাম| আমি এমন করেছিলাম কারণ যাতে তারা মরুভূমির মতো শুকিয়ে যায়| জেরুশালেম ও যিহূদা যাতে এমন ভাবে ধ্বংস হয় যা দেখে লোকরা শিস দিয়ে অভিশাপ দিতে পারে| এবং তাই ঘটেছিল বলে যিহূদার এখন এই দুরবস্থা| 19 মিশরের রাজা ফরৌণকেও আমি ঐ পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করালাম| রাজার সভাষদ, নেতৃবৃন্দ এবং তার সমস্ত লোকরা প্রভুর রোধর পেয়ালা থেকে দ্রাক্ষারস পান করল| 20 সমস্ত আরবের লোক এবং ঊষ দেশের সমস্ত রাজাকেও এই দ্রাক্ষারস পান করালাম|আমি পলেষ্টীয় দেশের সমস্ত রাজাদেরও এর থেকে পান করালাম| এরা ছিল অস্কিলোন, ঘসা, ইএোণ শহরের এবং অস্দোদ শহরের বেঁচে যাওয়া অংশের রাজাগণ| 21 তারপর আমি ইদোম, মোয়াব এবং অম্মোন দেশের লোকদেরও ঐ দ্রাক্ষারস পান করালাম| 22 সোর এবং সীদোনের শহরের রাজাদের ঐ পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করালাম|বহু দূরের দেশগুলির রাজাদেরও ঐ দ্রাক্ষারস পান করালাম| 23 দদান, টেমা, ছিন্নগুম্ফ এবং বূষ এর লোকদেরও ঐ দ্রাক্ষারস পান করালাম| যারা তাদের মন্দিরে চুল কেটেছে তাদেরও ঐ পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করালাম| 24 আরবের সমস্ত রাজা যারা মরুভূমিতে বাস করে তাদেরও পান করালাম| 25 সিম্রী, এলম এবং মাদীয়দের রাজাদেরও ঐ পেয়ালা থেকে পান করালাম| 26 আমি উত্তরের রাজাদের কাছে, যারা কাছে এবং দূরে ছিল তাদের কাছে গিয়েছিলাম| একের পর এক রাজাকে আমি ঐ দ্রাক্ষারস পান করালাম| ঐ দ্রাক্ষারসের পেয়ালা থেকে প্রভুর রোধ পান করাবার জন্য আমি পৃথিবীর প্রত্যেকটি রাজ্যে গেলাম| কিন্তু বাবিলেররাজা আর সমস্ত রাজ্যগুলির পরে এই দ্রাক্ষারস পান করবে| 27 “যিরমিয়, ঐ সমস্ত দেশগুলিকে বলো, সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমার রোধ ভর্তি ঐ দ্রাক্ষারস পান কর এবং তারপর বমি কর| তারপর শুয়ে পড়ো এবং উঠে দাঁড়িও না| কারণ এরপর আমি তোমাদের হত্যা করার জন্য তরবারি পাঠাচ্ছি|’ 28 “তোমার হাত থেকে ঐ দ্রাক্ষারস পান করতে য়ে সমস্ত লোকরা অস্বীকার করবে তাদের বলবে, ‘প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেন: প্রকৃতপক্ষে তোমরা এই পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করবে! 29 আমার নামাঙ্কিত জেরুশালেম শহরে আমি ইতিমধ্যেই খারাপ ঘটনাগুলি ঘটাচ্ছি| যদি তোমরা ভেবে থাকো য়ে তোমরা হয়তো শাস্তি পাবে না, তাহলে ভুল ভাববে| শাস্তি তোমরাও পাবে| পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে আমি তরবারির দ্বারা আক্রমণ করব|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 30 “যিরমিয়, তুমি আমার বার্তা তাদের দেবে: ‘ওপর থেকে, তাঁর পবিত্র মন্দির থেকে প্রভু তাঁর পশুচারণ ভুমির (তাঁর লোক জন) প্রতি চিত্কার করে উঠলেন| দ্রাক্ষারস তৈরীর সময় শ্রমিকরা য়েমন দ্রাক্ষার উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সমস্বরে চিত্কার করে তেমনি জোরে চিত্কার করছেন প্রভু| 31 পৃথিবীর সমস্ত লোকের মধ্যে এই আওয়াজ ছড়িয়ে পড়লো| এটা কিসের আওয়াজ? প্রভু সমস্ত দেশের মানুষদের শাস্তি দিচ্ছেন| লোকের বিরুদ্ধে প্রভু তার যুক্তি দেখাচ্ছেন| তিনি তাদের বিচার করেছেন এবং এখন তিনি সমস্ত অসত্ লোকদের একটি তরবারি দিয়ে হত্যা করছেন|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 32 প্রভু সর্বশক্তিমান যা বলেছেন তা হল: “শীঘ্রই এক দেশ থেকে আর এক দেশে বিপর্য়য ছড়িয়ে পড়বে| ভয়ঙ্কর ঝড়ের মতো সেই প্রলয পৃথিবীর বহু দূরে দূরে ছড়িয়ে যাবে|” 33 মৃত দেহগুলি দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে| কেউ শোক প্রকাশ করে কাঁদবে না| কেউ সেই মৃতদেহগুলি একত্রিত করে সত্কার করার বন্দোবস্ত করবে না| মৃত দেহগুলি পশুর বিষ্ঠার মতো মাটিতে পড়ে থাকবে| 34 মেষপালকরা (নেতারা) তোমরা মেষদের (লোকদের) নেতৃত্ব দেবে| মহান নেতৃবৃন্দ এবার কাঁদতে শুরু করো| মেষদের (মান্ুষদের) নেতারা যন্ত্রণায় মাটিতে ছটফট করো| কেন? কারণ এখন তোমাদের জবাই করার সময় এসেছে| আমি তোমাদের ছড়িয়ে দেব, ঠিক য়েমন একটি মাটির পাত্র ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে তেমন করে| 35 সেখানে মেষপালকদের লুকানোর কোন জায়গা থাকবে না| ঐ নেতারা পালাতে পারবে না| 36 আমি শুনতে পাচ্ছি মেষপালকরা চিত্কার করছে| কান্নাকাটি করছে| প্রভু তাদের গোচারণ ভূমিগুলি (দেশ) ধ্বংস করছেন| প্রভু রুদ্ধ হয়েছেন বলে এগুলো ঘটছে| 37 প্রভুর রোধর জন্য ঐ শান্তিপূর্ণ গোচারণ ভূমিগুলি একটি শূন্য মরুভূমির মত| 38 প্রভু হলেন গুহা থেকে বেরিয়ে আসা একটি ভয়ঙ্কর সিংহের মত| তাঁর রোধ লোকরা আহত হবে| এই দেশ মরুভূমিতে পরিণত হবে|
1 যিহূদার ওপর রাজা যিহোয়াকীমের শাসনের প্রথম বছরে এই বার্তা প্রভুর কাছ থেকে এসেছিল| যিহোয়াকীম ছিলেন য়োশিযের পুত্র| 2 প্রভু বলেছিলেন, “যিরমিয়, প্রভুর মন্দির চত্বরে দাঁড়াও এবং যারা এই মন্দিরে উপাসনা করতে আসে সেই সমস্ত যিহূদার লোকদের এই বার্তাটি বলো| আমি তোমাকে যা যা বলেছি সব তাদের বলো| আমার বার্তার কোন অংশ বাদ দিও না| 3 তারা হয়তো আমার কথা শুনবে এবং পালন করবে| তারা হয়ত অসত্ কাজকর্ম থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবে| যদি তারা আমার বার্তা মেনে চলে, তাহলে হয়ত আমি তাদের শাস্তি দেব না| অনেক খারাপ কাজকর্ম করেছিল বলেই আমি তাদের শাস্তি দেবার পরিকল্পনা করেছিলাম| 4 তুমি তাদের বলবে, ‘প্রভু বলেছেন: আমি আমার শিক্ষামালা তোমাদের দিয়েছি| তোমাদের উচিত্ আমার বাধ্য হওয়া এবং আমার শিক্ষামালা অনুসরণ করা| 5 আমার ভৃত্যরা যা বলে তা তোমাদের শুনতে হবে| (ভাব্বাদীরা হল আমার ভৃত্য) আমি বারবার তোমাদের কাছে ভাব্বাদীদের পাঠিয়েছি| কিন্তু তোমরা তাদের কোন কথা শোন নি| 6 আমি এই মন্দিরটিকে শীলোর মত করে করব| এবং লোকরা এই শহরটিকে একটি উদাহরণ হিসেবে গণ্য করবে যখন তারা অন্যান্য জায়গায় খারাপ ঘটনাসমূহ ঘটাতে ইচ্ছে করবে|”‘ 7 যিরমিয়র এই কথাগুলি প্রভুর মন্দিরে উপস্থিত যাজক, ভাব্বাদী এবং সমস্ত মানুষ শুনেছিল| 8 প্রভু যিরমিয়কে যা কিছু বলার আদেশ দিয়েছিলেন সে তা বলা শেষ করেছিল| তখন যাজক, ভাব্বাদী এবং সাধারণ লোক যিরমিয়কে জোর করে চেপে ধরে বলেছিল, “এই ভয়ঙ্কর কথাগুলি বলার জন্য এবার তোমার মৃত্যু হবে| 9 প্রভুর নাম করে এই ধর্মোপদেশ প্রচার করার তোমার কি করে সাহস হল? শীলোর মতো এই মন্দিরও ধ্বংস হয়ে যাবে একথা বলার সাহস তোমার কি করে হয়? কোন সাহসে তুমি বললে য়ে জেরুশালেম জনমানবহীন এক মরুভূমিতে পরিণত হবে?” প্রভুর মন্দিরেই সবাই যিরমিয়কে ঘিরে ধরল| 10 যিহূদার শাসকবৃন্দ শুনলেন কি কি ঘটেছে| তাই তাঁরা রাজপ্রাসাদের বাইরে বেরিয়ে এসে প্রভুর মন্দিরে গিয়েছিলেন| তাঁরা নতুন ফটকের প্রবেশদ্বারের মুখে, য়েটা প্রভুর মন্দিরের দিকে যাচ্ছে সেখানে বসলেন| ঐ নতুন ফটকদ্বারের পথ প্রভুর মন্দিরকেই নির্দেশ করে| 11 তখন যাজকবৃন্দ ভাব্বাদীগণ এবং সমস্ত সাধারণ মানুষ শাসকবৃন্দের সঙ্গে কথা বলল| তারা বলল, “যিরমিয়কে হত্যা করতেই হবে| সে জেরুশালেম সম্বন্ধে অমঙ্গলজনক কথাবার্তা বলে বেড়িযেছে| আপনারাও সে সব শুনেছেন|” 12 তখন যিরমিয় যিহূদার শাসকবৃন্দ ও সাধারণ লোকদের সঙ্গে কথা বলেছিল| সে বলল, “প্রভু আমাকে এই মন্দির এবং এই শহর সম্বন্ধে এই কথাগুলি বলবার জন্য পাঠিয়েছিলেন| আমি যা কিছু বললাম সেগুলি আমার কথা নয়, সেগুলো হল প্রভুর বক্তব্য| 13 আপনারা নিজেদের জীবনযাত্রা বদলে ফেলুন| ভাল কাজ করতে শুরু করুন| আপনারা আপনাদের প্রভু ঈশ্বরকে মান্য করুন| যদি আপনারা তা করেন তাহলে প্রভু তাঁর মত পরিবর্তন করবেন| তিনি য়ে অমঙ্গলজনক কথাবার্তা বলেছিলেন সেগুলি তিনি তাহলে বাস্তবে রূপান্তরিত করবেন না| 14 আর আমার ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমি হলাম আপনাদের ক্ষমতার অন্তর্গত| যা ভাল এবং ঠিক বুঝবেন তাই আমার সঙ্গে আপনারা করতে পারেন| 15 কিন্তু যদি আপনারা আমায় হত্যা করেন তাহলে একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যান, য়ে আপনারা এক জন নিরীহ লোককে হত্যা করতে চলেছেন| এই দোষের ভাগীদার হবে এই শহর এবং এই শহরের প্রত্যেক বাসিন্দা এবং তার জন্য দাযী হবেন আপনারা| প্রভু সত্যিই আমাকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন| আপনারা যা শুনেছেন তা পুরোটাই প্রভুর প্রেরিত বার্তা|” 16 এরপর যিহূদার শাসকবৃন্দ এবং সাধারণ লোক যাজকদের এবং ভাব্বাদীদের বললেন: “যিরমিয় এমন কিছু করেনি যাতে ওর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্য় হতে পারে| যিরমিয় আমাদের যা যা বলেছিল তা তার নিজের ভাষা নয়, তা ছিল প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের বক্তব্য|” 17 তখন শীর্ষস্থানীয কিছু নেতা উঠে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন| 18 তাঁরা বললেন, “মোরেষ্টীয শহরে মীখা নামের ভাব্বাদী ছিলেন| মীখা যখন ভাব্বাদী ছিলেন, তখন যিহূদার রাজা ছিলেন হিষ্কিয়| যিহূদার লোকদের মীখা এই কথাগুলি বলেছিলেন: সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন:“সিয়োন ধ্বংস হয়ে যাবে| জেরুশালেম পরিণত হবে একটি পাথরের স্তূপে| মন্দিরের চূড়া হয়ে যাবে একটি মাটির টিবি, ঝোপঝাড়ে আবৃত|” মীখা 3:12 19 “হিষ্কিয় যিহূদার রাজা ছিলেন এবং তিনি মীখাকে হত্যা করেন নি| মীখাকে যিহূদার সাধারণ লোকরাও হত্যা করে নি| তোমরা জানো য়ে হিষ্কিয় প্রভুকে ভয় পেতেন এবং সম্মান করতেন এবং তাঁকে খুশী করতে চাইতেন| প্রভু বলেছিলেন, তিনি যিহূদাতে অঘটন ঘটাবেন| কিন্তু হিষ্কিয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন এবং প্রভু তাঁর মত পরিবর্তন করেছিলেন| প্রভু আর তারপর যিহূদার কোন অমঙ্গল ঘটান নি| আমরা যদি যিরমিয়র কোন ক্ষতি করি তাহলে আমরা নিজেরাই নিজেদের ওপর অশান্তি টেনে আনব|” 20 অতীতে ঊরিয নামে এক জন প্রভুর বার্তা প্রচার করেছিলেন| ঊরিয ছিলেন শময়িয়ের পুত্র| ঊরিয বাস করতেন কিরিযত্ য়িযারীমস্থ শহরে| এই শহর এবং এই দেশের বিরুদ্ধে যিরমিয়র মত ঊরিয একই বার্তা প্রচার করেছিলেন| 21 রাজা যিহোয়াকীম, তাঁর সেনা প্রধানরা এবং নেতারা ঊরিযর ধর্মোপদেশ শুনে রেগে গিয়েছিলেন| রাজা যিহোয়াকীম ঊরিযকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন| কিন্তু ঊরিয শুনতে পেয়েছিলেন য়ে রাজা যিহোয়াকীম তাঁকে হত্যা করতে চাইছে| ঊরিয ভীত হয়ে মিশরে পালিয়ে গিয়েছিলেন| 22 কিন্তু রাজা যিহোয়াকীম ইল্নাথন সহ আরো কয়েক জনকে ঊরিযকে ধরে আনার জন্য মিশরে পাঠিয়েছিলেন| ইল্নাথন ছিলেন অক্বোরের পুত্র| 23 ঊরিযকে তারা মিশর থেকে ধরে বেঁধে এনেছিলেন| তারপর তাঁরা তাকে রাজার সামনে নিয়ে এসেছিলেন| রাজা যিহোয়াকীম ঊরিযকে তরবারি দিয়ে হত্যার আদেশ দিয়েছিলেন| ঊরিযকে হত্যা করার পর তাঁর মৃতদেহ কবরস্থানে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল| সেই কবরস্থানে শুধু গরীব লোকদের মৃতদেহই কবর দেওয়া হত| 24 যিহূদায় অহীকাম নামে এক ব্যক্তি ছিলেন| অহীকাম ছিলেন শাফনের পুত্র| অহীকাম যিরমিয়কে সমর্থন জানিয়ে ছিলেন| তিনি যিরমিয়কে যাজক এবং ভাব্বাদীদের হত্যার য়ড়য়ন্ত্র থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন|
1 যিহূদার রাজা সিদিকিযের শাসনকালে যিরমিয়র কাছে প্রভুর একটি বার্তা এলো| য়োশিযের পুত্র সিদিকিযের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছরে এই বার্তা এসেছিল| 2 প্রভু আমাকে যা বলেছিলেন তা হল এই: “যিরমিয় একটি জোযাল তৈরী করো এবং সেই জোযালটিকে তোমার কাঁধের ওপর স্থাপন কর| 3 তারপর ইদোম, মোয়াব, অম্মোন, সোর এবং সীদোনের রাজাদের কাছে খবর পাঠিয়ে দাও| এই সব বার্তাগুলি দূতদের মারফত্ সব রাজাদের কাছে পাঠিয়ে দাও, যারা যিহূদার রাজা সিদিকিয়কে জেরুশালেমে দেখতে এসেছিল| 4 এই বার্তাবাহকদের বলো তাদের মনিবকে গিয়ে বলতে প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: 5 তোমাদের মনিবকে গিয়ে বলো আমি এই পৃথিবী এবং তার মানুষদের সৃষ্টি করেছি| এই পৃথিবীর সমস্ত পশু পাখীও আমার সৃষ্টি| আমি আমার শক্তি এবং শক্তিশালী বাহু দিয়ে তা সৃষ্টি করেছি| আমি যাকে খুশী এই পৃথিবী দিয়ে দিতে পারি| 6 এখন আমি পৃথিবীর সমস্ত দেশ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে দিয়ে দিলাম| সে হল আমার অনুচর| সমস্ত বন্য জন্তুদেরও আমি তাকে মান্য করতে বাধ্য করবো| 7 সবগুলো জাতি নবূখদ্রিত্সর তাঁর পুত্র এবং তাঁর পৌত্রদের সেবা করবে| তারপর বাবিলের পরাজয় ঘটবে| অনেক রাষ্ট্রের মহান রাজারা মিলে বাবিলকে তাঁদের দাসে পরিণত করবেন| 8 “‘কিন্তু কয়েকটি দেশ হয়ত বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের সেবা করতে অস্বীকার করবে| তারা তার জোযাল টানতে অস্বীকার করবে| যদি তা হয় তাহলে আমি ঐ দেশগুলিকে শাস্তি দেব| তারা সইবে তরবারির আঘাত, অনাহার এবং মহামারীর যন্ত্রণা|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| “‘যতক্ষণ না দেশগুলি ধ্বংস হয় ততক্ষণ আমি ঐ শাস্তি বহাল রাখব| আমি নবূখদ্রিত্সরকে দিয়ে যুদ্ধ করিযে ঐ জাতিগুলিকে ধ্বংস করাবো| 9 সুতরাং তোমরা ভাব্বাদীদের কথা শুনবে না| শুনবে না সমস্ত লোকদের কথা যারা ভোজবাজি দেখিয়ে ভবিষ্যত্বাণী করে| যারা স্বপ্ন ব্যাখ্যা করতে পারে বলে দাবী করে তাদের কথা শুনো না| যারা মৃতদের সঙ্গে কথা বলে অথবা যাদু কৌশল করে তাদের কথা শুনো না| তারা প্রত্যেকে বলবে, “বাবিলের রাজার দাসত্ব তোমাদের করতে হবে না|” 10 কিন্তু তারা তোমাদের মিথ্য়ে বলবে| তারাই তোমাদের দেশত্যাগী হবার কারণ হবে | আমি তোমাদের জোর করে মাতৃভূমি ছেড়ে য়েতে বাধ্য করাবো এবং তোমরা বিদেশের মাটিতে মৃত্যুবরণ করবে| 11 “‘কিন্তু দেশগুলোর সমস্ত লোকরা যারা বাবিলের রাজার কাছে আত্মসমর্পন করবে, তাকে সেবা করতে রাজী হবে এবং তার জোযালে নিজেদের গলা দেবে, তারা বাঁচবে| আমি সেই লোকদের তাদের স্বদেশে বাস করতে দেব এবং তাদের জমি চাষ করতে দেব|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 12 “‘আমি যিহূদার রাজা সিদিকিযের কাছেও এই বার্তা পাঠিয়েছি| আমি তাকে বলেছি, “তোমাকে জোযালের নীচে কাঁধ রাখতে হবে| তোমাকে বাবিলের রাজাকে সেবা করতে হবে ও তার বাধ্য হতে হবে| যদি তুমি বাবিলের রাজা ও লোকদের সেবা করো তাহলে জীবিত থাকবে| 13 আর যদি তুমি রাজি না হও তাহলে তুমি ও তোমার দেশের মানুষ মারা যাবে শএুর তরবারির আঘাতে অথবা অনাহার ও মহামারীর দাপটে| প্রভু উল্লেখ করেছিলেন য়ে যারা বাবিলের রাজাকে মানতে অস্বীকার করবে সেই দেশে এগুলি ঘটবে| 14 কিন্তু ভ্রান্ত ভাব্বাদীরা বলতে থাকলো: তোমরা কখনও বাবিলের রাজার দাস হবে না| ঐ কপট ভাব্বাদীদের মিথ্য়ে প্রচারে কান দিও না| 15 আমি তাদের পাঠাই নি| “তারা মিথ্য়ে বলছে এবং বলছে য়ে এই বার্তাগুলি আমার কাছে থেকে এসেছে| তাই, যিহূদার লোকরা, আমি তোমাদের দূরে পাঠিয়ে দেব| তোমাদের মৃত্যু ঘটবে এবং ঐ মিথ্য়ুক ভাব্বাদীদেরও মৃত্যু ঘটবে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 16 তখন আমি (যিরমিয়) যাজক এবং সাধারণ লোকেদের বলেছিলাম, “প্রভু বলেছেন: ঐ কপট ভাব্বাদীরা বলে বেড়াচ্ছে, ‘বাবিলের লোকেরা প্রভুর মন্দির থেকে অনেক কিছু নিয়ে গিয়েছে| ঐ জিনিসগুলি খুব শীঘ্রই নিয়ে আসা হবে|’ ঐ ভাব্বাদীদের কথায় তোমরা কান দিও না| কারণ তারা মিথ্যা প্রচার করে বেড়াচ্ছে| 17 ঐ ভাব্বাদীদের কথা শুনো না| বাবিলের রাজার সেবা কর তাহলে তোমরা বেঁচে থাকবে| জেরুশালেমের শহর কেন ধ্বংস হবে এবং কেন শূন্য হয়ে যাবে? 18 যদি ঐ মানুষগুলোই ভাব্বাদী হয় এবং তারাই যদি প্রভুর বার্তা পেয়ে থাকে তাহলে তাদেরই প্রার্থনা করতে দাও| প্রভুর মন্দিরের বাদবাকী জিনিষগুলির সম্বন্ধে তারা প্রার্থনা করুক| তারা প্রার্থনা করুক য়ে মন্দিরের, জেরুশালেম শহরের এবং প্রাসাদের জিনিষপত্র বাবিলে বয়ে নিয়ে যাওয়া হবে না| ঐ ভাব্বাদীদের প্রার্থনা করতে দাও যাতে আর কোন জিনিষ তার জন্য বাবিলে নিয়ে যাওয়া না হয়|” 19 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন য়ে, জেরুশালেমের মন্দিরে কিছু জিনিষপত্র আছে: পড়ে থাকা জিনিষগুলির মধ্যে আছে স্তম্ভগুলো, পিতলের সমুদ্র, অস্থাবর দণ্ডসমূহ এবং অন্যান্য জিনিষপত্র| বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর ওগুলি আর নিয়ে যায় নি তাই রয়ে গিয়েছে| 20 যিহূদার রাজা য়িকনিযকে যখন বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিল তখন সে আর ঐ জিনিসগুলো নিয়ে যায় নি| য়িকনিয ছিল যিহোয়াকীমের পুত্র, নবূখদ্রিত্সর যিহূদা এবং জেরুশালেমের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও ধরে নিয়ে গিয়েছিল| 21 সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন য়ে প্রভুর মন্দিরে, রাজপ্রাসাদে এবং জেরুশালেমে পড়ে থাকা জিনিসপত্র বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে| 22 যতদিন না সেই দিনটি আসে য়েদিন আমি যাব এবং সেগুলি নিয়ে আসব ততদিন পর্য়ন্ত এই সব জিনিষগুলি বাবিলে থাকবে|”
1 যিহূদার রাজা সিদিকিযের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছরের পঞ্চম মাসে ভাব্বাদী হনানিয আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| হনানিয ছিলেন অসূরের পুত্র| হনানিয ছিলেন গিবিয়োন শহরের বাসিন্দা| প্রভুর মন্দিরে যাজকগণ ও আরো অনেকের উপস্থিতিতে হনানিয আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| হনানিয যা বলেছিলেন তা হল: 2 “ইস্রায়েলের ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন: ‘বাবিলের রাজা যিহূদার লোকদের কাঁধে দাসত্বের য়ে জোযাল চাপিয়েছেন তা আমি ভেঙে দেব| 3 বাবিলের রাজার দ্বারা প্রভুর মন্দির থেকে য়ে সমস্ত জিনিষ লুঠ হয়ে গিয়েছিল তার প্রত্যেকটি জিনিষ আমি দুবছরের মধ্যে তাদের জায়গায় ফেরত্ নিয়ে আসব| নবূখদ্রিত্সর বাবিলে যা কিছু নিয়ে গিয়েছে আমি সেগুলো জেরুশালেম দেশে ফেরত্ নিয়ে আসব| 4 যিহূদার রাজা যিহোয়াকীণকে, য়ে যিহোয়াকীমের পুত্র, তাকেও এখানে ফিরিয়ে আনব| বাবিলের রাজা যিহূদার য়ে সমস্ত মানুষকে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়েছিল তাদের সবাইকে আমি আবার যিহূদায় ফিরিয়ে আনব| আমি যিহূদার লোকদের বাবিলের রাজার দাসত্ব থেকে মুক্তি দেব|”‘ 5 প্রভুর মন্দিরে দাঁড়িয়ে যাজক ও অন্যান্য লোকদের উপস্থিতিতে ভাব্বাদী যিরমিয়, ভাব্বাদী হনানিযকে উত্তর দিল| 6 যিরমিয় হনানিযকে বলল, “আমেন! আমি আশা করি তুমি প্রভুর নামে য়ে বার্তা প্রচার করেছো তা প্রভু সত্যি করে তুলবেন| আমি আশা করি প্রভু সব কিছু আবার ফিরিয়ে আনবেন| আশা করি তিনি ফিরিয়ে আনবেন উপাসনাগৃহের লুণ্ঠিত জিনিসপত্র এবং বাবিলে দাসত্ব করা যিহূদার সমস্ত লোকদের| 7 “কিন্তু আমাকে যা বলতেই হবে তা শোন, হনানিয শোন, শোন উপস্থিত লোকরা| 8 হনানিয তোমার অনেক আগে আরও অনেক ভাব্বাদী ছিলেন এবং আমি ভাব্বাদী হতে পারতাম| তারা প্রচার করেছিল অনেক দেশগুলিকে যুদ্ধ, অনাহার, মহামারী গ্রাস করবে| অনেক মহত্ রাজ্যের বিরুদ্ধেও তারা এধরণের ভাব্বাণী দিয়েছিল| 9 কিন্তু য়ে ভাব্বাদীরা শান্তির ভাব্বাণী প্রচার করে, সেই ভাব্বাণীগুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে য়ে সত্যিই সেগুলি প্রভুর পাঠানো কিনা| সত্যি হলেই বোঝা যাবে য়ে সেই ভাব্বাদী সত্যি সত্যিই প্রভুর দ্বারা প্রেরিত| যদি কোন ভাব্বাদীর বাণী সঠিক হয় তাহলে মানুষকে বুঝতে হবে ঐ ভাব্বাদী প্রভুর দ্বারা প্রেরিত|” 10 যিরমিয় একটি জোযাল তার নিজের কাঁধে চাপাচ্ছিল| আর তখন সেই জোযাল ভাব্বাদী হনানিয যিরমিয়র কাঁধ থেকে সরিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলল| 11 হনানিয চিত্কার করে সবাইকে শুনিয়ে বলে উঠেছিলেন, “প্রভু বলেছেন: ‘এই ভাবে ঠিক আমি বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের দাসত্বের জোযাল ভেঙে ফেলব| সমস্ত পৃথিবীর কাঁধে সে য়ে দাসত্বের জোযাল চাপিয়েছে আমি তা দু বছরের মধ্যেই ভেঙে ফেলব|”‘হনানিযর এই কথা শেষ হওয়ার পর যিরমিয় উপাসনাগৃহ ত্যাগ করে চলে গেল| 12 হনানিয যিরমিয়র কাঁধ থেকে জোযালটি তুলে নেওয়ার পর এবং সেটি ভাঙ্গবার পর প্রভু যিরমিয়র সঙ্গে কথা বললেন| 13 প্রভু যিরমিয়কে বললেন, “যাও হনানিযকে গিয়ে বলো প্রভু বলেছেন: ‘তুমি একটি কাঠের জোযাল ভেঙেছ| এবার আমি লোহার জোযাল তৈরী করব|’ 14 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু বললেন, ‘আমি প্রত্যেকটি দেশকে লোহার জোযালে বাঁধ্ব| তারপর আমি এই সব জাতিগুলিকে দিয়ে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে সেবা করাব| আমি নবূখদ্রিত্সরকে বন্য পশুদেরও শাসন করার ক্ষমতা দেব|”‘ 15 ভাব্বাদী যিরমিয় তখন ভাব্বাদী হনানিযকে বলেছিল, “শোন হনানিয! তোমাকে প্রভু পাঠান নি| কিন্তু তুমি যিহূদার লোকদের মিথ্যাকে বিশ্বাস করতে শিখিযেছো| 16 তাই প্রভু বলেছেন, ‘শীঘ্রই আমি তোমাকে এই পৃথিবীর বাইরে সরিয়ে দেব হনানিয| তোমার এবছরেই মৃত্যু হবে| কেন? কারণ তুমি লোকদের প্রভুর বিরুদ্ধে যাবার শিক্ষা দিয়েছো|”‘ 17 হনানীয সেই বছরেই সপ্তম মাসে মারা গিয়েছিলেন|
1 যিরমিয় ইহুদীদের কাছে, যারা বাবিলে বন্দী ছিল, একটি চিঠি পাঠিয়েছিল| একই চিঠি সে বাবিলে বাস করা নেতাদের, যাজকদের, ভাব্বাদীদের এবং সাধারণ লোকদের পাঠিয়েছিল| এদের সবাইকে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর জেরুশালেম থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল| 2 (রাজা য়িকনিয, রানী মা, সভাপরিষদ, যিহূদা এবং জেরুশালেমের নেতৃবৃন্দকে, ছুতোর মিস্ত্রীদের এবং কামারদের জেরুশালেম থেকে নির্বাসিত হিসেবে নিয়ে যাবার পর এই চিঠি পাঠানো হয়েছিল| এদের সবাইকে জেরুশালেম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল|) 3 যিহূদার রাজা সিদিকিয় নবূখদ্রিত্সরের কাছে ইলিয়াসা এবং গমরিযকে পাঠিয়েছিল| ইলিয়াসা ছিল শাফনের পুত্র এবং গমরিয ছিল হিল্কিয়ের পুত্র| যিরমিয় ঐ দুজনকে বাবিলে পৌঁছিযে দেওয়ার জন্য একটি চিঠি দিয়েছিল| চিঠির বক্তব্য ছিল এই: 4 ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেন তাদের সবাইকে যাদের তিনি জেরুশালেম থেকে বাবিলে নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন: 5 “ওখানেই তোমরা স্থায়ী ভাবে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করো| চাষ আবাদ করে নিজেদের খাদ্যশস্য নিজেরাই ফলাও| 6 ব্বিাহ করে তোমরা সন্তানদের জন্ম দাও| পুত্র কন্যাদেরও ব্বিাহ দাও| তারাও য়েন সন্তান উত্পাদন করে যাতে বাবিলে সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়| প্রজন্মকে বাড়াও| কখনও সংখ্যালঘু হয়ে পোড়ো না| 7 য়ে শহরে আমি তোমাদের পাঠিয়েছি সেই শহরের উন্নতির জন্য ভালো কাজ কর| শহরের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো| কারণ শহরে যদি শান্তি বিরাজ করে তাহলে তোমরাও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে|” 8 ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: “ভাব্বাদীদের এবং যাদুকরদের তোমাদের ঠকাতে দিও না| তাদের স্বপ্নদর্শনের কথায় কান দিও না| 9 তারা মিথ্য়ে প্রচার করে বেড়ায| তারা নিজেদের বাণীকে আমার নামে চালায| কিন্তু আমি তাদের পাঠাই নি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 10 প্রভু যা বলেছেন তা হল এই: “70 বছরের জন্য বাবিলের এই ক্ষমতা ও আধিপত্য থাকবে| তারপরে আমি তোমাদের কাছে যারা বাবিলে বাস করছ তাদের কাছে আসবো এবং আমার প্রতিশ্রুতি মতো তোমাদের জেরুশালেমে ফিরিয়ে নিয়ে আসব| 11 আমি আমার পরিকল্পনাগুলো কি তা জানি| তাই এগুলো তোমাদের বললাম|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমি তোমাদের সুনিশ্চিত নিরাপদ ভবিষ্যত্ দিতে চাই| তোমাদের জন্য আমার ভাল ভাল পরিকল্পনা আছে| তোমাদের আঘাত করবার কোন পরিকল্পনা আমার নেই| আমি তোমাদের আশা এবং সু-ভবিষ্যত্ দিতে চাই| 12 তখন তোমরা লোকরা, আমার নামে মিনতি করবে, আমার কাছে এসে প্রার্থনা করবে| আমি তোমাদের কথা শুনব| 13 তোমরা আমাকে খুঁজে বেড়াবে এবং যখন তোমরা অন্তর দিয়ে আমাকে অন্বেষণ করবে তখনই আমাকে খুঁজে পাবে| 14 আমি তোমাদের আমাকে খুঁজতে দেব|” প্রভু বলেন: “আমি তোমাদের নির্বাসন থেকে এই জায়গায় ফিরিয়ে আনব| আমিই সেই জন য়ে তোমাদের বন্দীরূপে পাঠিয়ে ছিলাম| কিন্তু আমি তোমাদের সমস্ত দেশ থেকে এবং সমস্ত জায়গা থেকে যেখানে আমি তোমাদের বন্দীরূপে পাঠিয়ে ছিলাম সকলকে একত্রিত করব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 15 তোমরা হয়ত বলবে, “কিন্তু প্রভু তো আমাদের এই বাবিলে ভাব্বাদীদের দিয়েছেন|” 16 কিন্তু প্রভু এইগুলি বলেছেন তোমাদের আত্মীযদের সম্বন্ধে যাদের বাবিলে নিয়ে আসা হয়নি| আমি বলছি দাযূদের সিংহাসনে বসা বর্তমান রাজা এবং সেই সব লোকদের সম্বন্ধে যারা এখনও জেরুশালেমে পড়ে আছে| 17 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন: “জেরুশালেমে যারা রয়ে গিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আমি তরবারি, অনাহার ও ভয়ঙ্কর রোগসমূহ পাঠাব| আমি তাদের সেই সমস্ত বাজে ডুমুরের মতো করে দেব য়েগুলো খাওয়া যায় না য়েহেতু সেগুলো পচা| 18 আমি তাদের তরবারি, অনাহার ও রোগসমূহ দিয়ে তাড়া করব| আমি তাদের দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা এমন ভযাবহ করে তুলব য়ে পৃথিবীর সমস্ত দেশগুলি বিস্ময বিহবল এবং ভীত হয়ে যাবে| তারা ধ্বংস হয়ে যাবে| তাদের নামগুলো অভিশাপ হিসেবে ব্যবহৃত হবে| সমস্ত জাতিগুলি, যেখানে আমি তাদের পাঠাব, ওদের অপমান করবে| 19 জেরুশালেমের মানুষ আমার বার্তা শোনেনি বলে আমি তাদের এই দুরবস্থা করব|” আমি আমার অনুচর এবং ভাব্বাদীদের মারফত্ বার বার আমার বার্তা পাঠিয়েছি| কিন্তু তারা শোনেনি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 20 “তোমরা লোকরা যারা নির্বাসনে রয়েছ, শোন! আমিই সে জন য়ে তোমাদের জেরুশালেম ছেড়ে বাবিলে য়েতে বাধ্য করেছিলাম| সেহেতু তোমরা প্রভুর বার্তা শোন|” 21 কোলাযের পুত্র আহাব এবং মাসেযের পুত্র সিদিকিয় সম্বন্ধে সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: “এই দুজন তোমাদের কাছে মিথ্যা প্রচার করেছে| তারা বলে বেড়াচ্ছে য়ে তারা আমার বাণী প্রচার করছে| কিন্তু তারা মিথ্যা বলছে| আমি ঐ ভাব্বাদীদের বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে দিয়ে দেব এবং নবূখদ্রিত্সর ঐ দুই জন ভাব্বাদীকে বাবিলে নির্বাসিত সমস্ত লোকদের সামনে হত্যা করবে| 22 সমস্ত নির্বাসিতদের কাছে এই হত্যা শাস্তির উদাহরণ হিসেবে মনে থাকবে| ঐ বন্দী যিহূদার অন্যদের বলবে: ‘প্রভু তোমাদের সঙ্গেও সিদিকিয় এবং আহাবের মতো ব্যবহার করতে পারেন| বাবিলের রাজা ওই দুজনকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে|’ 23 ঐ দুই ভাব্বাদী ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছিল| তারা তাদের প্রতিবেশীদের স্ত্রীর সঙ্গে পাপ ও ব্যভিচারে মেতে উঠেছিল| তারা মিথ্য়ে প্রচার করে তা আমার নামে চালিযেছিল| আমি তাদের ওসব করতে বলিনি| আমি জানি তারা কি করেছিল| আমি তার এক জন সাক্ষী|” এই হল প্রভুর বার্তা| 24 শময়িয়কেও একটা বার্তা দাও| শময়িয় নিহিলামীয পরিবারের| 25 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু বললেন: “শময়িয় তুমি জেরুশালেমবাসীকে চিঠি পাঠিয়েছিলে এবং মাসেযের পুত্র যাজক সফনিয়কেও চিঠি পাঠিয়েছিলে| অন্য সমস্ত যাজকদেরও চিঠি পাঠিয়েছিলে| তুমি তোমার নামে সে সব চিঠি পাঠিয়েছিলে, প্রভুর নামে নয়| 26 শময়িয় তুমি তোমার চিঠিতে সফনিয়কে যা লিখেছিলে তা হল: ‘সফনিয়, প্রভু তোমাকে যিহোয়াদার জায়গায় যাজক হিসেবে নিয়োগ করেছেন| তুমিই প্রভুর মন্দিরের দায়িত্বে থাকবে| কেউ ভাব্বাদী হবার পাগলামি করলে তুমি তাকে বন্দী করবে| তুমি সেই বন্দীকে কাষ্ঠদণ্ডে পা বেঁধে তার ঘাড়ে লোহার শেকল পরিযে দেবে| 27 এখন যিরমিয় ভাব্বাদীদের মতো ব্যবহার করছে| সুতরাং কেন তুমি তাকে বন্দী করছো না? 28 যিরমিয় বাবিলে আমাদের কাছে এই কথাগুলি পাঠিয়েছে: “বাবিলে তোমাদের দীর্ঘদিনের জন্য বাস করতে হবে| সুতরাং তোমরা সেখানেই ঘরবাড়ি তৈরী করে থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করো| চাষ-আবাদ করে নিজেরাই নিজেদের খাদ্যশস্য উত্পাদন করো|”‘ 29 ভাব্বাদী যিরমিয়কে যাজক সফনিয় চিঠি পড়ে শোনাল| 30 তখন যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এলো: 31 “যিরমিয় এই কথাগুলি, বাবিলে যারা নির্বাসিত, সেই সমস্ত লোকের কাছে পাঠিয়ে দাও| শময়িয় নিহিলামীযটি সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল এই: শময়িয় তোমাদের কাছে বার্তা প্রচার করেছে কিন্তু আমি তাকে পাঠাই নি| শময়িয় তোমাদের মিথ্যাকে বিশ্বাস করতে শিখিযেছিল| 32 শীঘ্রই আমি শময়িয়কে শাস্তি দেব| শময়িয়ের পরিবারকেও ধ্বংস করে দেব এবং আমি আমার লোকদের যা কিছু ভাল করব তার থেকেও সে বঞ্চিত হবে|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| “‘আমি শময়িয়কে শাস্তি দেব কারণ সে লোকদের প্রভুর বিরুদ্ধে যাবার শিক্ষা দিয়েছিল|”‘
1 ঈশ্বরের কাছ থেকে যিরমিয়র কাছে এই বার্তা এসেছিল| 2 ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু বললেন, “আমি যা বলেছি, যিরমিয়, তুমি তা একটি খাতায় লিখে রাখো| তারপর তা দিয়ে তুমি নিজের জন্য এই বইটি লিখো| 3 যা বলছি তা কর কারণ এমন দিন আসবে য়েদিন আমি ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকদের নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনব|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমি তাদের পূর্বপুরুষদের য়ে দেশ দিয়েছিলাম সেখানে তাদের ফিরিয়ে দেব| তখন আমার লোকরা আর এক বার সেই জমির মালিকানা পাবে|” 4 প্রভু ইস্রায়েলের এবং যিহূদার লোকদের সম্বন্ধে এই বার্তা উচ্চারণ করেছিলেন| 5 প্রভু যা বলেছিলেন তা হল:“আমরা শুনতে পাচ্ছি ভয় পেয়ে লোকরা কাঁদছে! লোকরা ভীত! সেখানে কোন শান্তি নেই! 6 “এই প্রশ্নটি করো এবং তার সম্বন্ধে ভাবো: একজন পুরুষ কি একটি শিশুকে জন্ম দিতে পারে? নিশ্চয়ই নয়| তাহলে কেন আমি দেখতে পাচ্ছি প্রত্যেকটি শক্তিশালী পুরুষ প্রসব বেদনায় কাতর একজন মহিলার মতো পেটে হাত দিয়ে আছে? কেন প্রত্যেকটি মানুষের মুখ মৃত ব্যক্তির মতো পাঁশুটে বর্ণ ধারণ করেছে? কারণ তারা প্রত্যেকে হঠাত্ ভীষণ ভয় পেয়েছে|” 7 “যাকোবের জন্য এটা একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সময়| এই সময়টা একটা খুব বড় অশান্তির সময়| আর কখনও এরকম সমস্যা সঙ্কুল সময় আসবে না| কিন্তু যাকোব রক্ষা পাবে| 8 এই হল সর্বশক্তিমান প্রভুর বার্তা: “সেই সময় আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকদের কাঁধে চাপানো জোযাল সরিয়ে নেব| তোমাদের দড়ির বাঁধন খুলে দেব| অন্য জাতির লোকরা আর কখনও আমার লোকদের দাসত্ব করতে বাধ্য করবে না| 9 তারা আর কোন বিদেশী রাজ্যের সেবা করবে না| তারা শুধু প্রভু তাদের ঈশ্বরের সেবা করবে এবং তারা তাদের রাজা দাযূদের সেবা করবে| আমি রাজাকে তাদের কাছে পাঠাব| 10 “সুতরাং যাকোব, আমার ভৃত্যদের ভয় পেও না!” “ইস্রায়েল ভয় পেও না| আমি তোমাকে রক্ষা করব| রক্ষা করব বন্দীদের পরবর্তী উত্তরপুরুষদেরও| আমি তাদের নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনব| আবার যাকোব শান্তি ফিরে পাবে| লোকরা তাকে আর বিরক্ত করবে না| সেখানে আর কোন শএু থাকবে না যাকে আমার লোকরা ভয় পাবে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 11 যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকরা আমি তোমাদের সঙ্গে আছি|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমি তোমাদের রক্ষা করবো| একথা সত্যি য়ে আমি তোমাদের অন্য দেশে পাঠিয়েছিলাম| আমি ঐসব দেশগুলিকে ধ্বংস করব, কিন্তু তোমাদের আমি ধ্বংস করব না| খারাপ কাজের শাস্তি তোমাদের পেতেই হবে| আমি তোমাদের ন্যায্যভাবে শিক্ষা দেব| আমি তোমাদের শাস্তি না নিয়ে য়েতে দেব না|” 12 প্রভু বললেন: “এমন কোন আঘাত আছে কি যা সারে না? ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকেরা, তোমাদের ক্ষত এমন য়ে তা সারবে না| 13 এমন কোন ব্যক্তি নেই য়ে তোমাদের ক্ষতের যত্ন নিতে পারে| তাই তোমাদের আঘাত সারবে না| 14 তোমরা বহু দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিযেছিলে কিন্তু তোমাদের দিকে তারা প্রযোজনের সময় ফিরেও তাকাযনি| তোমাদের বন্ধুরা তোমাদের ভুলে গিয়েছে| আমি তোমাদের শএুর মতো কঠিন আঘাত করেছিলাম| আমি তোমাদের কঠোর শাস্তি দিয়েছিলাম| তোমরা বহু মারাত্মক পাপ করেছিলে বলে তোমাদের সঙ্গে আমি ঐ ব্যবহার করেছি| 15 ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকরা কেন তোমরা তোমাদের ক্ষত নিয়ে এতো চিত্কার করেছো? ক্ষতের যন্ত্রণা তো হবেই এবং কেউ তা সারাতে পারবে না| আমি প্রভু, তোমাদের বহু ভয়ঙ্কর পাপের ফলস্বরূপ এই শাস্তি দিয়েছি| 16 আমি প্রভু, তোমাদের ধ্বংস করেছিলাম| কিন্তু এখন ওদের ধ্বংস হবার পালা| ইস্রায়েল ও যিহূদা তোমাদের শএুরা এবার বন্দী হবে| ওরা তোমাদের জিনিস চুরি করেছিল| এবার অন্যরা ওদের জিনিসপত্র চুরি করবে| ওরা যুদ্ধের সময় তোমাদের জিনিস নিয়ে গিয়েছিল| এবার যুদ্ধের সময় ওদের জিনিস অন্যরা নিয়ে যাবে| 17 আমি তোমাদের আবার স্বাস্থ্য়বান করে তুলব| আমি তোমাদের ক্ষত সারিয়ে দেব|” এই হল প্রভুর বার্তা| “কেন? কারণ লোকরা তোমাদের জাতিচ্য়ূত বলে উল্লেখ করেছে| ওরা বলেছিল, ‘সিয়োনকে দেখাশোনা করবার কেউ নেই|”‘ 18 প্রভু বলেছেন: “যাকোব পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা বর্তমানে নির্বাসিত হলেও তারা ফিরে আসবে এবং আমি যাকোবের বাড়ীগুলির ওপর করুণা দেখাব| এখন শহরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত গৃহগুলি দ্বারা আবৃত একটি শূন্য পাহাড় মাত্র| কিন্তু এই শহর আবার পুনর্নিমিত হবে এবং আবার রাজপ্রাসাদ তৈরী হবে নির্দিষ্ট স্থানে| 19 আবার শহরটি গমগম করবে লোকদের গানে ও প্রশংসায| কেউ তাদের উপহাস করবে না| আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের অনেক সন্তান দেব| আমি তাদের জন্য গৌরব আনব| কেউ তাদের নীচ নজরে দেখবে না| 20 “অনেক আগে য়েমন ইস্রায়েলের পরিবার ছিল তেমনই হবে যাকোবের পরিবার| যিহূদা ও ইস্রায়েলের য়েমন পরিবার ছিল তেমনই হবে যাকোবের পরিবার| যিহূদা ও ইস্রায়েলকে আমি শক্তিশালী করে তুলব| এবং যারা তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে আমি তাদের শাস্তি দেব| 21 তাদের নিজেদের এক জনই নেতৃত্ব দেবে| সেই শাসক আমারই লোকের থেকে আসবে| তারা আমার কাছের লোক হবে| আমি তাদের নেতাকে আমার কাছে আসতে বলব এবং সে হবে আমার কাছের লোক| 22 তোমরা হবে আমার লোক আর আমি হব তোমাদের ঈশ্বর|” 23 প্রভু ভীষণ রুদ্ধ ছিলেন! তিনি দুষ্ট ব্যক্তিদের শাস্তি দিয়েছিলেন| তার শাস্তি এসেছিল ঘূর্ণি ঝড়ের মতো| 24 প্রভুর রোধ প্রশমিত হবে না যতক্ষণ না য়েরকম পরিকল্পনা করেছেন সেই ভাবে শাস্তি দেন| শেষের দিনগুলিতে তোমরা এসব বুঝতে পারবে|
1 প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন, “সে সময় আমি ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারবর্গের ঈশ্বর হব| এবং তারা হবে আমার লোক|” 2 প্রভু বলেছেন: “যারা শএুর তরবারির আক্রমণ থেকে পালিয়ে বেঁচ্ছেিল তারা মরুভূমিতেই আরাম খুঁজে পাবে| ইস্রায়েল সেখানে বিশ্রামের জন্য যাবে|” 3 বহুদূর থেকে প্রভু লোকদের দৃষ্টিগোচরে আসবেন| প্রভু বলেছেন, “আমি তোমাদের একটি অফুরন্ত ভালবাসা দিয়ে ভালবেসে ছিলাম| সেই জন্য আমি তোমাদের প্রতি দযা দেখানো চালিযে গিয়েছিলাম| 4 “ইস্রায়েল, আমার কনে, তোমাকে আবার নতুন করে তৈরী করব| তুমি আবার একটি দেশ হবে| পুনরায় তুমি তোমার খঞ্জনীসমূহ তুলে নেবে| খুশীর জোযার ভাসা লোকদের সঙ্গে তালে তাল মিলিযে তুমিও নেচে উঠবে| 5 ইস্রায়েলের কৃষক, তোমরা আবার দ্রাক্ষা চাষ করবে| শময়িয়র শহরের চারপাশের পাহাড় ঘিরে তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরী করবে| কৃষকরা সেই দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে উত্পন্ন হওয়া দ্রাক্ষার ফসল তুলবে এবং ঐ দ্রাক্ষা খেযে উপভোগ করবে| 6 একটা নির্দিষ্ট সময়ে পাহারাদার এই বাণী চিত্কার করে বলবে: ‘চলো, সিয়োনে গিয়ে আমাদের প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের উপাসনা করি!’ এমন কি ইফ্রযিম পার্বত্য প্রদেশে পাহারাদাররাও ঐ বাণী চিত্কার করে বলবে|” 7 প্রভু বললেন, “সুখী হও! যাকোবের জন্য গান গাও! ইস্রায়েলের জন্য চিত্কার করো| ইস্রায়েল হল মহান রাষ্ট্র| প্রশংসা কর এবং চিত্কার করে বলো: ‘প্রভু তাঁর লোকদের রক্ষা করেছেন! ইস্রায়েলের যারা বন্দী হয়েছিল তাদের সবাইকে প্রভু রক্ষা করেছেন|’ 8 মনে রেখো, আমি ইস্রায়েলকে ঐ উত্তরের দেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসব| আমি উত্তরের বহু দূরের জায়গা থেকে ইস্রায়েলীয়দের একত্রিত করব| তাদের মধ্যে কিছু লোক থাকবে অন্ধ ও পঙ্গু| কিছু মহিলা থাকবে গর্ভবতী| কিন্তু অনেক অনেক মানুষ ফিরে আসবে সেখানে| 9 তারা কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসবে কিন্তু আমি তাদের সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা দেব| আমি তাদের জলপ্রবাহের পাশ দিয়ে নেতৃত্ব দেব| আমি তাদের মসৃণ রাস্তার ওপর নেতৃত্ব দেব যাতে তারা হোঁচট না খায়| আমি এরকম করব য়েহেতু আমি ইস্রায়েলের পিতা এবং ইফ্রযিম আমার প্রথম সন্তান| 10 “জাতিসমূহ, প্রভুর কথাগুলি শোন! সমুদ্রের ধারে দূর দেশগুলিতে এই বার্তা বল| ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তাদের একত্র করে ফিরিয়ে আনবেন| এবং তিনি তার মেষপালের (লোকেদের) ওপর নজর রাখবেন মেষপালকের মতো|” 11 প্রভু যাকোব পরিবারকে ফিরিয়ে আনবেন| তিনি তাঁর লোকদের তাদের চেয়ে শক্তিশালী লোকদের হাত থেকে রক্ষা করবেন| 12 সিয়োনের শিখরে উঠে আসবে ইস্রায়েলের মানুষ| তারা আনন্দে উল্লাস করবে| তাদের মুখমণ্ডলের ওপর আনন্দ ও সুখের দীপ্তি দেখা দেবে| প্রভু য়ে সমস্ত ভালো জিনিষগুলি তাদের দেবেন সে সম্বন্ধে তারা খুশী হবে| প্রভু তাদের শস্যসমূহ, নতুন দ্রাক্ষারস, জলপাইযের তেল, মেষ এবং গরুসমূহ দেবেন| ইস্রায়েলের লোকের আর কোন সমস্যা থাকবে না| তাদের জীবন হয়ে উঠবে একটি বাগানের মত যাতে অনেক জল আছে| 13 যুবতীরা আনন্দে নৃত্য করবে| যুবক ও বৃদ্ধরাও সেই নৃত্যে অংশ নেবে| আমি তাদের শোককে আনন্দে পরিণত করব| আমি ইস্রায়েলের লোকদের আরাম দেব এবং দুঃখের বদলে তাদের আনন্দ দেব| 14 আমি তাদের যাজকদের প্রচুর খাদ্য দেব| আমার লোকরা, আমি তাদের য়ে ভালো জিনিষগুলি দেব তাতে সন্তুষ্ট হবে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 15 প্রভু বললেন, “রামা থেকে কান্না ও দুঃখের শব্দ শোনা যাবে| রাহেলাতার সন্তানদের জন্য কাঁদবে| মৃত সন্তানদের জন্য রাহেল আরাম নিতে অস্বীকার করবে|” 16 কিন্তু প্রভু বললেন, “কান্না থামাও| চোখের জল মুছে নাও! তুমি তোমার কৃতকার্য়ের জন্য পুরস্কৃত হবে| এই হল প্রভুর বার্তা| “ইস্রায়েলের লোকরা তাদের শএুর দেশ থেকে ফিরে আসবে| 17 ইস্রায়েল, তোমার জন্য আশা আছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তোমার সন্তানরা তাদের স্বদেশে ফিরে আসবে| 18 ইফ্রযিমের কান্না আমি শুনতে পেয়েছি| ইফ্রযিম কাঁদতে কাঁদতে বলছে: ‘প্রভু আপনি আমাকে সত্যি শাস্তি দিয়েছেন এবং আমি আমার শিক্ষা পেয়ে গিয়েছি| আমি ছিলাম একটি বাছুরের মতো যাকে কখনও শিক্ষা দেওয়া হয়নি| আপনিই আমার প্রভু ঈশ্বর| অনুগ্রহ করে আমার শাস্তি তুলে নিন| আমি আপনার কাছে ফিরে আসব| 19 প্রভু আমি আপনার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম কিন্তু আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি| তাই আমি আমার হৃদয় এবং আমার জীবন পরিবর্তন করেছি| আমি আমার বোকামিতে নিজেই ভীষণ লজ্জিত| আমার য়ৌবনের খারাপ কাজগুলো আজ আমাকেই অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছে|”‘ 20 ঈশ্বর বললেন, “তুমি কি জানো ইফ্রযিম আমার প্রিয পুত্র? আমি তাকে ভালোবাসি| ভীষণ ভালোবাসি এবং আমি তাকে সত্য স্বাচ্ছন্দ্য দিতে চাই|” এই হল প্রভুর বার্তা| 21 “ইস্রায়েলবাসী, রাস্তার সংকেত চিহ্নগুলিকে স্থাপন কর| পথ চিহ্নগুলি তুলে ধরো য়েগুলি বাড়ীর দিকে নির্দেশ করে| য়ে রাস্তায় তুমি হেঁটে এসেছ তা লক্ষ্য করো এবং মনে রেখো| ইস্রায়েল, আমার কনে, ঘরে ফিরে এসো| ফিরে এসো তোমার নিজের শহরগুলিতে| 22 অবিশ্বস্ত কন্যা, কতদিন তুমি এভাবে ঘুরে বেড়াবে? কবে তুমি ঘরে ফিরবে?” “প্রভু যখন দেশে কোন নতুন কিছু সৃষ্টি করেন (তখন) এক জন পুরুষকে এক জন মহিলা ঘিরে থাকে|” 23 ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “যিহূদার লোকদের জন্য আমি আবার ভাল কিছু করব| যাদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদের আমি ফিরিয়ে আনব| সেই সময়, যিহূদা শহরগুলির লোকরা আবার ঐ কথাগুলি বলবে: ‘ধার্মিক বাসস্থান ও পবিত্র পর্বত, প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন|’ 24 “যিহূদার সমস্ত শহরে শান্তি বিরাজ করবে| কৃষক এবং মেষপালকরা উভয়েই শান্তিতে বসবাস করবে| 25 যারা ক্লান্ত এবং অসুস্থ তাদের আমি বিশ্রাম ও শক্তি য়োগাব এবং যারা দুঃখিত ছিল তাদের ইচ্ছাসমূহ পূর্ণ করব|” 26 একথা শোনার পর আমি (যিরমিয়) জেগে উঠে চারি দিকে তাকালাম| আমার খুব ভাল ঘুম হয়েছিল| 27 এই হল প্রভুর বার্তা| “সেই দিন আসছে যখন আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের তাদের সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করব| আমি তাদের সন্তান ও গবাদি পশুদের সংখ্যায় বেড়ে উঠতে সাহায্য করব এটা হবে গাছ পোঁতা ও তার দেখাশোনা করবার মত| 28 অতীতে আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার ওপর নজর রেখেছিলাম কিন্তু সেটা ছিল তাদের ভেঙ্গে ফেলবার জন্য| আমি তাদের ধ্বংস করেছিলাম| আর এখন তাদের গড়ে তোলবার জন্য এবং তাদের শক্তিশালী করবার জন্য তাদের ওপর নজর রাখব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 29 “লোকরা আর কখনও বলবে না:পিতামাতা টক দ্রাক্ষা খেযেছিল, কিন্তু তাদের সন্তানরা টক স্বাদ পেয়েছিল| 30 না, প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের পাপের জন্যই মারা যাবে| য়ে ব্যক্তি টক দ্রাক্ষা খাবে সে নিজেই টক স্বাদ পাবে|” 31 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: “সময় আসছে যখন আমি নতুন একটি চুক্তি করব যিহূদা ও ইস্রায়েলের পরিবারের সঙ্গে| 32 আমি তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছিলাম এটা সেরকম নয়| তাদের মিশর থেকে বাইরে নিয়ে আসার সময় আমি ঐ চুক্তি করেছিলাম| আমি ছিলাম তাদের প্রভু, কিন্তু তারা সেই চুক্তি ভেঙে ফেলেছিল|” এই হল প্রভুর বার্তা| 33 “ভবিষ্যতে, আমি এই বন্দোবস্ত ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে করব|” এটি হল প্রভুর বার্তা| আমি আমার শিক্ষামালা তাদের মনে গেঁথে দেব এবং তাদের হৃদয়ে লিখে দেব| আমি হব তাদের ঈশ্বর আর তারা হবে আমার লোক|” 34 “লোকদের তাদের প্রতিবেশীদের অথবা তাদের আত্মীযদের প্রভুকে জানতে শেখাবার কোন প্রয়োজন পড়বে না| কারণ ক্ষুদ্রতম থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্য়ন্ত সব লোকরা আমায় জানবে| আমি তাদের দুষ্ট কাজগুলি ক্ষমা করে দেব এবং তাদের পাপসমূহ মনে রাখব না|” এই হল প্রভুর বার্তা| 35 প্রভু বললেন: “দিনের রৌদ্র কিরণ প্রভুর সৃষ্টি এবং প্রভু সৃষ্টি করেছেন চাঁদ, তারাদের ঔজ্জ্বল্য| প্রভু সৃষ্টি করেছেন সমুদ্রতট যেখানে ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে| তাঁর নাম হল সর্বশক্তিমান প্রভু|” 36 প্রভু একথাগুলি বললেন, “ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষ একটি জাতি হওয়া থেকে বিরত হবে| তারা একটি জাতি হওয়া থেকে বিরত হবে তখনই যদি আমি সূর্য়, চন্দ্র, তারা এবং সমুদ্রের ওপর থেকে আমার নিয়ন্ত্রণ হারাই|” 37 প্রভু বললেন: “ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষকে আমি কখনও অস্বীকার করব না| তাদের তখনই বাতিল করব যখন তারা আকাশের পরিমাপ করতে পারবে এবং পৃথিবীর নীচের সমস্ত গোপন তথ্য জানতে পারবে| এক মাত্র তখনই আমি তাদের অসত্ কর্মসমূহের জন্য বাতিল করব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 38 এই হল প্রভুর বার্তা, “দিন আসছে যখন প্রভুর জন্য জেরুশালেম শহর পুনর্নিমিত হবে| হননেলের দুর্গ থেকে কোণের ফটক পর্য়ন্ত শহরে প্রতিটি জিনিষকে আবার গড়ে তোলা হবে| 39 শহরের সীমান্তরেখা টানা হবে প্রান্তিক ফটক থেকে সোজাসুজি গারেব পাহাড় পর্য়ন্ত, তারপর সেই রেখা ঘুরে যাবে গোযা পয়সু3| 40 উপত্যকাটি, যেখানে মৃতদেহগুলি ও ছাই ইতস্ততঃ ছড়ানো রয়েছে, প্রভুর কাছে পবিত্র হয়ে উঠবে| কিদ্রোণ উপত্যকার একেবারে নীচ পর্য়ন্ত সমস্ত ছাদগুলি, অশ্বফটকের কোণ পর্য়ন্ত সমস্ত রাস্তাগুলিও প্রভুর কাছে পবিত্র হয়ে উঠবে| জেরুশালেম শহরকে আর কখনো ধ্বংস করা হবে না অথবা বিচ্ছিন্ন করা হবে না|”
1 যিহূদার রাজা সিদিকিযের রাজত্ব কালে প্রভুর বার্তা এল যিরমিয়র কাছে| নবূখদ্রিত্সর যখন রাজা হিসেবে 18 বছর পূর্ণ করেছেন তখন সিদিকিয় রাজা হিসেবে 10 বছরে পা দিয়েছেন| 2 সেই সময় বাবিলের সৈন্যরা জেরুশালেম শহরের চারদিকে ঘিরে ধরেছিল এবং যিরমিয় কয়েদ হিসেবে রক্ষীদের উঠোনে ছিল| এই উঠোনটি যিহূদার রাজার প্রাসাদে ছিল| 3 (যিহূদার রাজা যিরমিয়কে সেখানে কারাবন্দী করে রেখেছিল কারণ সে তার পূর্ব থেকে করা ভাব্বাণী পছন্দ করত না| যিরমিয় বলেছিল, “প্রভু বলেছেন: ‘আমি শীঘ্রই বাবিলের রাজাকে জেরুশালেম দিয়ে দেব| নবূখদ্রিত্সর এই শহরকে অধিগ্রহণ করবে| 4 যিহূদার রাজা সিদিকিয়, বাবিলের সৈন্যদের হাত থেকে পালাতে সক্ষম হবে না| সৈন্যরা তাকে নবূখদ্রিত্সরের হাতে তুলে দেবে| এবং দুই রাজা মুখোমুখি কথা বলবে| সিদিকিয় স্বচক্ষে নবূখদ্রিত্সরকে দেখতে পারবে| 5 বাবিলের রাজা সিদিকিয়কে বাবিলে নিয়ে যাবে| আমি তাকে শাস্তি না দেওয়া পর্য়ন্ত সিদিকিয় বাবিলেই থাকবে|’ এই হল প্রভুর বার্তা| ‘তোমরা যদি বাবিলের সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, তোমরা তাদের ওপর জিততে সক্ষম হবে না|”‘) 6 যিরমিয় যখন বন্দী ছিল তখন সে বলেছিল, “প্রভুর বার্তা আমার কাছে এসেছিল| এই হল সেই বার্তা: 7 যিরমিয়, তোমার খুড়তুতো ভাই, হনমেল শীঘ্রই তোমার কাছে আসবে| হনমেল হল তোমার কাকা শল্লুমের পুত্র| হনমেল এসে বলবে, ‘যিরমিয়, অনাথোত শহরের কাছে আমার জমিটা তুমি কিনে নাও| তুমি আমার নিকট আত্মীয বলেই তোমাকে এই প্রস্তাব দিচ্ছি| জমিটা কেনার অধিকার এবং দায়িত্ব তোমার|’ 8 “প্রভু যা বলেছিলেন তাই ঘটল| আমার খুড়তুতো ভাই হনমেল রক্ষীদের উঠোনে আমার কাছে এলো এবং বলল, ‘যিরমিয় তুমি আমার অনাথোত শহরের কাছে বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর সীমানার অন্তর্ভুক্ত জমিটা কিনে নাও| এটা তোমার অধিকার ও দায়িত্ব| তাই তুমি তোমার জন্য জমিটা কিনে নাও|’“সুতরাং আমি জানতাম য়ে প্রভুর বার্তা কি ছিল| 9 আমি হনমেলের কাছ সুক অনাথোত শহরের জমিটা কিনলাম| জমির দাম হিসেবে আমি হনমেলকে 17 শ্কেল রৌপ্য়মুদ্রা দিয়েছিলাম| 10 আমি সেই জমি বিক্রিীর চুক্তিপত্রে সই করে তা যত্ন করে তুলে রেখে দিলাম| জমি বিক্রিীর সময় আমি কয়েকজনকে সাক্ষী হিসাবেও উপস্থিত রেখেছিলাম| দাম মেটানোর সময়, যখন আমি রূপাটি ওজন করছিলাম তারাও উপস্থিত ছিল| 11 তারপর আমি সীলমোহর করা একটি প্রত্যযিত নকল প্রমাণপত্র নিলাম আর একটি সীলমোহর বিহীন প্রতিলিপি নিলাম| 12 এবং সেগুলি আমি বারূকের হাতে তুলে দিলাম| বারূক হল নেরিযের পুত্র| নেরিযে ছিল মহসেযের পুত্র| সীলমোহর করা প্রতিলিপিতে আমার জমি কেনার সমস্ত চুক্তি ও শর্ত লেখা ছিল| আমি যখন বারূককে সেই সীলমোহর করা দলিলের প্রতিলিপি দিচ্ছিলাম তখন সেখানে হনমেল সহ অন্যান্য সাক্ষীরাও উপস্থিত ছিল| সাক্ষীরাও জমি কেনার চুক্তি পত্রে সই করেছিল| যিহূদার আরও অনেক লোক সেখানে উপস্থিত ছিল| 13 “তাদের প্রত্যেকের উপস্থিতিতে আমি বারূককে বললাম: 14 ‘ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: ‘সীলমোহর করা ও সীলমোহর বিহীন দুটি প্রতিলিপিই নাও এবং দুটোকেই একটি মাটির পাত্রে রাখো| এভাবে রাখলে জমি বিক্রিরি দলিলের প্রতিলিপিগুলি দীর্ঘদিন ঠিক থাকবে, নষ্ট হবে না| 15 সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “ভবিষ্যতে আমার লোকরা আবার ইস্রায়েলে বাড়ি, জমি ও দ্রাক্ষাকুঞ্জ কিনবে|”‘ 16 “বারূকের হাতে ঐ দলিল তুলে দেবার পর প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলাম: 17 “প্রভু ঈশ্বর আপনি আপনার বিরাট শক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এই আকাশ ও পৃথিবী| আপনার পক্ষে কিছুই করা খুব একটা শক্ত নয়| 18 প্রভু আপনি হাজার হাজার লোকের প্রতি বিশ্বস্ত ও দযালু| কিন্তু আবার আপনিই সেইজন যিনি পিতাদের পাপসমূহের জন্য তাদের সন্তানদের শাস্তি দিচ্ছেন| হে মহান ও শক্তিশালী ঈশ্বর, আপনার নাম হল প্রভু সর্বশক্তিমান| 19 আপনি পরিকল্পনা মত মহান কাজ করেছেন| প্রভু, লোকরা যা করে আপনি তা সবই দেখতে পান| সত্ মানুষকে পুরস্কৃত করছেন আবার অসত্ মানুষকে তার য়োগ্য শাস্তি দিচ্ছেন| 20 প্রভু আপনি মিশরে শক্তিশালী অলৌকিক ঘটনা ঘটিযেছেন| এমনকি আজও আপনি আপনার শক্তির মহিমা প্রকাশ করছেন| ইস্রায়েলেও ঘটিযেছেন অলৌকিক ঘটনা| যেখানে মানুষ সেখানেই আপনি আপনার অলৌকিক শক্তির প্রকাশ ঘটিযেছেন| আপনি আপনার এই মৌলিক ক্ষমতার জন্যই বিখ্যাত| 21 আপনার ক্ষমতা কল্পনাতীত| আপনি আপনার শক্তিশালী অলৌকিক ক্ষমতা ও বিস্মযকর ভয়ঙ্কর ক্ষমতা প্রযোগ করে মিশর থেকে আপনার লোকদের ইস্রায়েলে নিয়ে এসেছিলেন| 22 “প্রভু আপনি ইস্রায়েলের লোকদের এই দেশ দিয়েছেন| এই সেই দেশ য়েটি বহু বছর আগে আপনি তাদের পূর্বপুরুষদের দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| এটি একটি দেশ যেখানে দুধ ও মধু বয়ে যাচ্ছে| 23 ইস্রায়েলের লোকরা এই দেশে এসে দেশটিকে নিজেদের করে নিয়েছিল কিন্তু আপনাকে তারা মান্য করেনি| তারা আপনার পাঠ ও শিক্ষাকে অনুসরণ করেনি| তারা আপনার নির্দেশ মেনে চলেনি| তাই ইস্রায়েলের লোকদের ওপর আপনি এই সব সাংঘাতিক ব্যাপারগুলি সংঘটিত করিযেছেন| 24 “এবং তখন এই শহর শএু পরিবেষ্টিত| সৈন্যরা জাঙ্গাল নির্মাণ করছে যাতে তারা জেরুশালেম শহরের প্রাচীরগুলোর ওপর চড়তে পারে এবং তাকে অবরোধ করতে পারে| তরবারি, অনাহার এবং ভয়ঙ্কর মহামারী ছড়িয়ে বাবিলের সৈন্যরা জেরুশালেমকে পরাজিত করবে| বাবিলের সৈন্যরা এখন আক্রমণ করতে এগিয়ে আসছে| প্রভু, আপনি বলেছিলেন এই ঘটনা ঘটবে| এখন দেখুন কি কি ঘটছে| 25 “প্রভু আমার চারিদিকে এমন দুরবস্থা কিন্তু আপনি আমাকে বলেছেন, ‘যিরমিয়, সাক্ষীর উপস্থিতিতে রৌপ্য় মুদ্রার বিনিময়ে ঐ জমিটা কিনে নাও|’ আপনি আমাকে এ কথা বলছেন যখন বাবিলের সৈন্যদল শহর আক্রমণ করবার জন্য প্রস্তুত| “তাহলে কেন আমি এই অবস্থায় জমি কিনে অর্থ নষ্ট করব?” 26 তখন প্রভুর বার্তা এল যিরমিয়র কাছে: 27 “যিরমিয়, আমি প্রভু, আমি প্রতিটি জীবন্ত বস্তুর ঈশ্বর| যিরমিয়, তুমি জান, আমার পক্ষে কোন কিছুই অসম্ভব নয়|” 28 প্রভু আরো বলেছিলেন, “শীঘ্রই আমি বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে জেরুশালেম দিয়ে দেব| বাবিলের সৈন্যরা জেরুশালেম শহর অধিগ্রহণ করে নেবে| 29 বাবিলের সৈন্যরা ইতিমধ্যেই আক্রমণ করেছে| তারা জেরুশালেম শহরে আগুন বালিয়ে ধ্বংস করে দেবে| এই শহরের লোকরা তাদের বাড়িগুলির মাথায় বালের মূর্ত্তিগুলি রেখেছে, তাকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছে, পূজো করেছে এবং অন্যান্য দেবতাদের পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করে আমাকে রুদ্ধ করে তুলেছে| বাবিলের সৈন্যরা সেই ইমারত্গুলিকে পুড়িয়ে ছাই করে দেবে| 30 আমি সবকিছু লক্ষ্য রাখছি| দেখছি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকরা অসংখ্য পাপ কাজ করে যাচ্ছে| য়ৌবন থেকেই তারা খারাপ কাজ করে আসছে| তাদের এই কাজই আমাকে রুদ্ধ করে তুলেছে| তারা তাদের নিজেদের হাতে তৈরী মূল্যহীন দেবতাদের পূজো করেছে| সেই কারণে আমি খুব রুদ্ধ হয়েছি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 31 “জেরুশালেম নির্মিত হবার সময় থেকে আজ পর্য়ন্ত সেখানকার লোকরা আমাকে রুদ্ধ করেছে| আমি এতো রুদ্ধ য়ে আমি আর জেরুশালেমকে সহ্য করতে পারছি না| অতএব ওটাকে আমার চোখের সামনে থেকে আমায় সরাতে হবে| 32 আমি জেরুশালেমকে ধ্বংস করব কারণ যিহূদা এবং জেরুশালেমের লোকরা অনেক অসত্ কাজ করেছে| যিহূদা এবং জেরুশালেমের মানুষ, রাজা, নেতৃবৃন্দ, যাজক এবং ভাব্বাদীরা প্রত্যেকে আমাকে রুদ্ধ করে তুলেছে| 33 “আমার কাছে সাহায্যের জন্য ওই লোকদের আসা উচিত্ ছিল| কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে মুখ ঘুরিযে নিয়েছিল| আমি তাদের বার বার শেখাবার চেষ্টা করেছিলাম| কিন্তু তারা আমার কথা শোনে নি| আমি চেষ্টা করেছি তাদের শুধরে দিতে| কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে চায় নি| 34 তারা তাদের মূর্ত্তিগুলি গড়েছিল য়েটা আমি ঘৃণা করি| তারা তাদের মূর্ত্তিগুলোকে আমার নামাঙ্কিত মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেছিল| এই ভাবে তারা আমার মন্দির অপবিত্র করে তুলেছিল|’ 35 “তারা বিন-হিন্নোম উপত্যকায় বাল মূর্ত্তির জন্য উচ্চস্থানসমূহ গড়েছিল| পূজার ঐ সব জায়গাগুলিতে মোলকের মূর্ত্তিকে হোমবলি নৈবেদ্য দেবার জন্য তারা তাদের সন্তানদের পোড়াত| আমি তাদের এসব করার নির্দেশ দিইনি| আমি কখনো ভাবতেও পারি নি য়ে যিহূদার মানুষ এরকম ভয়ঙ্কর কাজ করতে পারে| 36 তোমরা বলছো, ‘বাবিলের রাজা জেরুশালেম অধিগ্রহণ করবে| তরবারি, অনাহার ও ভয়ঙ্কর মহামারীর আঘাতে জেরুশালেমের পরাজয় ঘটবে|’ কিন্তু প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: 37 ‘আমি যিহূদা, ইস্রায়েলের লোকদের তাদের দেশ ছেড়ে চলে য়েতে বাধ্য করেছি| তাদের ওপর আমি প্রচণ্ড রুদ্ধ ছিলাম| কিন্তু আমিই আবার তাদের এখানে ফিরিয়ে আনব| আমি আবার তাদের সমস্ত দেশগুলি থেকে, যেখানে আমি তাদের য়েতে বাধ্য করেছিলাম, সেখান থেকে সংগ্রহ করব এবং তাদের এখানে ফিরিয়ে আনব এবং তাদের শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন করতে দেব| 38 যিহূদা এবং ইস্রায়েলের লোকরা হবে আমার লোক আর আমি হব তাদের ঈশ্বর| 39 আমি ঐ সব লোকেদের মধ্যে এক হবার ইচ্ছা আরোপ করব| তাদের সকলের একটাই লক্ষ্য থাকবে এবং তা হল আমাকে সারা জীবন উপাসনা করে যাওয়া| আমাকে উপাসনা করার ফলে এবং সম্মান করার ফলে তাদের এবং তাদের সন্তানদের ভালো করবে| 40 “‘যিহূদা ও ইস্রায়েলের মানুষদের সঙ্গে আমি একটি চুক্তি করব| এই চুক্তি চির কালের জন্য বহাল থাকবে| এই চুক্তিতে আমি ওদের কাছ থেকে নিজেকে কখনো সরিয়ে নেব না| আমি তাদের প্রতি সর্বদা মঙ্গলকর থাকব| তারা যাতে আমাকে সম্মান করতে চায় আমি তাদের তাই করব| ওরাও কখনও আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাবে না| 41 তারা আমাকে খুশী করবে| আমিও আনন্দের সঙ্গে ওদের জন্য ভালো কাজ করব| আমি নিশ্চিত ভাবে ওদের এখানে নিয়ে এসে বড় করে তুলবো| আমি এগুলো করব আমার হৃদয় ও আত্মা দিয়ে|”‘ 42 প্রভু যা বলেন তা হল এই: “ঠিক য়েমন আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকদের জীবনে বিপর্য়য এনেছিলাম সেই ভাবেই আমি তাদের ভালোও করব| আমি তাদের জন্য ভাল কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলাম| 43 তোমরা বলছো: ‘বাবিলের সৈন্য এদেশকে একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত করেছে| এখানে কোন প্রাণের স্পন্দন নেই|’ কিন্তু ভবিষ্যতে মানুষ এখানেই বাস করার জন্য জমি কিনবে| 44 মানুষ অর্থ ব্যয করে জমি কিনবে| তারা তাদের চুক্তিগুলিতে সই করবে ও সীলমোহর লাগাবে| জমি কেনার জন্য দলিলে সই করবার সময় সাক্ষীসমূহ উপস্থিত থাকবে| বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠী যেখানে থাকতো সেখানকার জমি মানুষ আবার কিনবে| তারা জেরুশালেমের চারপাশের জমি এবং যিহূদার শহরগুলির, পার্বত্য দেশের, পশ্চিম পাদদেশের এবং দক্ষিণের মরুভূমি এলাকার জমি কিনবে| এরকমই ঘটবে কারণ আমি সবাইকে ঘরে ফিরিয়ে আনব|” এই হল প্রভুর বার্তা|
1 প্রভুর কাছ থেকে দ্বিতীয় বারের জন্য এই বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| যিরমিয় তখনও রক্ষীদের উঠোনে কারারুদ্ধ| 2 প্রভুই বিশ্বকে সৃষ্টি করেছিলেন এবং তিনিই বিশ্বকে রক্ষা করেছেন| প্রভু হল তার নাম| প্রভু বলেছেন, 3 “যিহূদা আমার কাছে প্রার্থনা করো, আমি তোমার প্রার্থনার উত্তর দেব| আমি তোমাকে গুরুত্বপূর্ণ গোপন কথা বলব| য়ে কথা এর আগে তুমি শুনতে পাওনি| 4 প্রভু হলেন ইস্রায়েলের ঈশ্বর| যিহূদার রাজপ্রাসাদ এবং জেরুশালেমের ঘরবাড়ি সম্বন্ধে প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| শএুরা ঐ সমস্ত ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলবে| শএুরা ঐ সমস্ত শহরে প্রাচীর ভেঙে ফেলে তরবারি হাতে শহরের অভ্য়ন্তরের বাসিন্দাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে| 5 জেরুশালেমের লোকরা অসংখ্য খারাপ কাজ করেছে| আমি তাদের প্রতি রুদ্ধ| আমি তাদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছি| তাই আমি অসংখ্য মানুষকে হত্যা করব| যখন বাবিলের সৈন্যদল জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে, তখন জেরুশালেমের বাড়ীগুলোতে মৃতদেহ পড়ে থাকবে| 6 “কিন্তু তখন আমি তাদের সারিয়ে দেব| ফিরিয়ে দেব তাদের আনন্দ ও শান্তিপূর্ণ জীবন| 7 তারপর আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের তাদের দেশে ফিরিয়ে আনব| অতীতের মতো আবার আমি তাদের শক্তিশালী করে তুলব| 8 তারা আমার বিরুদ্ধে য়ে পাপ করেছিল সব পাপ আমি ধুয়ে দেব| তারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল কিন্তু আমি তাদের ক্ষমা করে দেব| 9 তখন জেরুশালেম আবার অপূর্ব হয়ে উঠবে| সেখানে লোকরা খুশীতে আনন্দ করবে| অন্য জাতির লোকেরা যখন ভালো কাজগুলির কথা, য়েগুলো আমি জেরুশালেমের জন্য করছি শুনতে পাবে, তখন তারা আমার প্রশংসা করবে| আমি জেরুশালেমে য়ে সমৃদ্ধি ও শান্তি আনছি তার জন্য জাতিগুলি আমাকে ভয় ও শ্রদ্ধা করবে| 10 “লোকরা, তোমরা বলছো, ‘আমাদের দেশতো এখন শূন্য মরুভূমি| এখানে প্রাণের কোন চিহ্ন নেই|’ জেরুশালেমের পথ সমূহে এবং যিহূদার শহরগুলিতে কোন শব্দ শোনা যাচ্ছে না| কিন্তু খুব শীঘ্রই তোমরা এই জায়গাগুলিতে শব্দ শুনতে পাবে| 11 গানের শব্দ এবং উত্সবের শব্দ শোনা যাবে| বর ও কনের আনন্দপূর্ণ কোলাহল শোনা যাবে| লোকরা তাদের উপহার সামগ্রী নিয়ে মন্দিরে আসবে| তারা বলবে, ‘সর্বশক্তিমান প্রভুর প্রশংসা করো কারণ তিনি ভালো| তাঁর সত্যকার ভালবাসা চিরকাল প্রবহমান|’ ওরা একথা বলবে কারণ আমি আবার যিহূদার ভালো করব| সে জায়গা আগের মত হয়ে যাবে|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 12 প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, “এখন এই জায়গা শূন্য| এখানে এখন কোন প্রাণী যাবে না | কিন্তু যিহূদার প্রত্যেকটি শহরে লোক বাস করবে| সেখানে থাকবে মেষপালকরা| থাকবে পশুচারণের তৃণভূমি| সেখানে মেষপালকরা মেষের পালকে চরাবে| 13 মেষপালক য়েমন তার মেষ গোনে, লোকরা তেমনি সর্বত্র তাদের মেষ গুনবে- পাহাড়ী দেশে, পশ্চিমের পাদদেশে, নেগেভে এবং যিহূদার অন্যান্য সব শহরগুলিতেও|” 14 এই হল প্রভুর বার্তা: “আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের কাছে একটি বিশেষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম| আমার সেই প্রতিশ্রুতি পালনের সময় আসছে| 15 আমি দাযূদের পরিবার থেকে একটি ভালো ‘শাখাকে’ বৃদ্ধি করব| সেই ‘শাখা’ বেড়ে উঠবে এবং দেশের জন্য সঠিক এবং ভাল কাজসমূহ করবে| 16 এই ‘শাখার’ সময় যিহূদার লোকরা বেঁচে যাবে| জেরুশালেমের লোকেরা নিরাপদে বসবাস করতে পারবে| সেই ‘শাখার’ নাম হল: ‘প্রভু মঙ্গলময|”‘ 17 প্রভু বলেছেন, “দাযূদ পরিবারের এক জন ইস্রায়েলের সিংহাসনে সর্বদা শাসন করবে| 18 এবং যাজকগণ হবে সর্বদা লেবীয় ় পরিবার থেকে| ঐ যাজকগণ সর্বদাই আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার উদ্দেশ্যে হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং বলি দেবে|” 19 প্রভুর এই বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| 20 প্রভু বললেন, “দিন ও রাত্রির সঙ্গে আমার একটি চুক্তি আছে| তারা একইভাবে বরাবর ঘুরে ফিরে আসবে| তোমরা এই চুক্তি বদল করতে পারবে না| দিন ও রাত্রি সঠিক সময়েই আসবে| 21 তোমরা যদি এই বন্দোবস্ত বদল করতে পারো তাহলে তোমরা দাযূদ ও লেবীয় পরিবারের সঙ্গে আমার য়ে চুক্তি তাও বদলে দিতে পারবে| তখন আর দাযূদ ও লেবীয় পরিবারের উত্তরপুরুষরা রাজা বা যাজক হবে না| 22 কিন্তু আমার সেবক দাযূদ ও লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অসংখ্য উত্তরপুরুষ দেব| তারা সংখ্যায় আকাশের তারাদের মতো অগণিত হবে, হবে সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচের বালুকণার মতো যা কেউ কোনদিন গুনে শেষ করতে পারবে না|” 23 প্রভুর এই বার্তা যিরমিয় গ্রহণ করল: 24 “যিরমিয়, তুমি কি শুনতে পাচ্ছো লোকরা কি বলছে? ঐ লোকরা বলছে, ‘প্রভু ইস্রায়েল ও যিহূদার দুই পরিবারের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছেন| প্রভু তাদের নির্বাচন করেছেন, কিন্তু এখন তিনি তাদের একটি জাতি বলে গ্রহণ করেন না|’ 25 প্রভু বলেছেন, “দিন ও রাত্রির সঙ্গে আমার বন্দোবস্ত যদি না স্থায়ী হয় এবং যদি আমি পৃথিবী ও আকাশের জন্য বিধি তৈরী না করতাম, তাহলে হয়তো আমি ঐ লোকদের ত্যাগ করতাম| 26 তাহলে যাকোবের উত্তরপুরুষদের কাছ থেকেও সরে য়েতাম এবং তাহলে হয়তো আমি দাযূদের উত্তরপুরুষদের অব্রাহাম, ইস্হাক এবং যাকোবের উত্তরপুরুষদের শাসন করতে দিতাম না| কিন্তু দাযূদ হল আমার সেবক এবং আমি ঐ লোকদের প্রতি দযা দেখাব| আমি ওদের জন্য ভালো কিছু ঘটিযে দেব|”
1 প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর যখন জেরুশালেম এবং তার চারপাশের সমস্ত শহরগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল তখন প্রভুর বার্তা যিরমিয়র কাছে এসেছিল| নবূখদ্রিত্সরের সঙ্গে ছিল তার সমস্ত সৈন্য এবং তার সাম্রাজ্য| তার শাসনাধীন সমস্ত রাজ্যের সৈন্যসমূহ এবং লোকরা| 2 এই হল বার্তা: “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: যিরমিয় যিহূদার রাজা সিদিকিয়কে গিয়ে তাকে এই বার্তা দাও: ‘সিদিকিয়, প্রভু যা বলেছেন তা হল: আমি খুব শীঘ্রই বাবিলের রাজাকে জেরুশালেম দিয়ে দেব| এবং সে জেরুশালেমকে পুড়িয়ে দেবে| 3 সিদিকিয়, তুমি পালাতে পারবে না, ধরা পড়বেই| তোমাকেও বাবিলের রাজার হাতে তুলে দেওয়া হবে| তুমি বাবিলের রাজাকে স্বচক্ষে দেখতে পাবে| রাজার সঙ্গে তোমার মুখোমুখি কথা হবে এবং তোমাকে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে| 4 কিন্তু যিহূদার রাজা সিদিকিয়, প্রভুর প্রতিশ্রুতি শোন| প্রভু তোমার সম্বন্ধে এই কথা বলেছেন: তোমার মৃত্যু তরবারির আঘাতে হবে না| 5 তোমার মৃত্যু হবে শান্তিতে| অতীতে অন্ত্য়োষ্টি এযিা যাত্রার সময় তোমার পূর্বপুরুষদের জন্য, তোমার পূর্বে য়ে রাজা শাসন করেছিল তাদের য়ে ভাবে লোকে সম্মান দেখিয়েছিল, একই ভাবে তারাও তোমার অন্ত্য়োষ্টি এযিায তোমাকে সম্মান জানাবে| তারা তোমার জন্য চোখের জল ফেলবে এবং বিষন্নভাবে বলবে, “হে মনিব!” আমি নিজে আপনার কাছে প্রতিশ্রুতি করছি|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 6 তাই যিরমিয় প্রভুর এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল জেরুশালেমে সিদিকিযের কাছে| 7 তখন বাবিলের রাজা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে সৈন্যসামন্ত নিয়ে যুদ্ধ করছে| যিহূদার য়ে সমস্ত শহরগুলি তখনও অধিকৃত হয়নি সেগুলি অধিকার করবার লক্ষ্য নিয়ে বাবিলের সৈন্যদল যুদ্ধ করছিল| ঐ শহরগুলি ছিল লাখীশ এবং অসেকা- দুটি শহর য়েগুলি দুর্গদ্বারা রক্ষিত ছিল| 8 ইব্রীয দাসদের মুক্তির জন্য রাজা সিদিকিয় জেরুশালেমের লোকেদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল| সিদিকিয় চুক্তি করবার পর যিরমিয়র কাছে ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি বার্তা এসেছিল| 9 প্রত্যেকেই তার ইব্রীয দাসকে মুক্তি দেবে| স্ত্রী ও পুরুষ ইব্রীয দাস দাসীরা দাসত্ব থেকে মুক্তি পাবে| কেউ যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর কাউকে দাসত্বের শৃঙ্খল পরাতে পারেনি| 10 সুতরাং সমস্ত নেতৃবৃন্দ ও লোকরা এই চুক্তি গ্রহণ করেছিল| প্রত্যেকেই রাজী হয়েছিল তাদের দাসদের মুক্তি দেবার প্রশ্োন| এবং তাই প্রত্যেক দাসই স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল| 11 কিন্তু তারপর যাদের দাস ছিল তারা মত পরিবর্তন করে সেই সব দাসদের দাসত্বের জন্য ধরে এনেছিল| 12 তখন প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে: 13 যিরমিয় প্রভু় ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল: “মিশর থেকে আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিলাম| তারাও সেখানে দাসত্ব করত| যখন আমি তাদের নিয়ে এসেছিলাম তখন আমি তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম| 14 আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছিলাম: ‘প্রতি 7 বছর পর প্রত্যেককে তার ইব্রীয দাসকে মুক্তি দিতে হবে| কোন ইব্রীয যদি নিজেকে তোমার কাছে বিক্রিও করে দেয় তাহলেও 6 বছর পর তাকে তুমি মুক্তি দিয়ে দেবে|’ কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি| 15 কিছু দিন আগে তোমরা তোমাদের মন পরিবর্তন করেছিলে এবং আমার মতে, তোমরা ঠিক কাজ করেছিলে| তোমার ইব্রীয দাসদের মুক্ত করেছিল| এমন কি তোমরা মন্দিরেও এসেছিলে য়েটি আমার নামে নামাঙ্কিত এবং আমার সামনে একটি চুক্তি করেছিলে| 16 কিন্তু এখন আবার তোমরা তোমাদের মন পরিবর্তন করেছো এবং আমার নামকে অসম্মান করেছো| কি করে তোমরা এটা করলে? তোমরা আবার সেই সব ইব্রীয নারী পুরুষদের জোর করে ধরে এনে তোমাদের দাস করলে অথচ এদেরই কিছু দিন আগে তোমরা মুক্ত করে দিয়েছিলে| 17 “তাই প্রভু যা বলেছেন তা হল: ‘তোমরা আমাকে অমান্য করেছিলে| তোমরা তোমাদের ইব্রীয দাসদের মুক্তি দাও নি| তোমরা চুক্তি রক্ষা করো নি| কিন্তু আমি তোমাদের “স্বাধীনতা” দেব|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| তরবারিসমূহ, অনাহার এবং মারাত্মক রোগসমূহ দ্বারা মরবার জন্য আমি তোমাদের “স্বাধীনতা” দেব| সারা বিশ্ব জানবে তোমাদের দুরবস্থার কথা| 18 যারা চুক্তিটি ভঙ্গ করেছিল আমি তাদের শএুদের হাতে তুলে দেব| তারা য়ে বাছুরটি দু-খণ্ড করেছিল এবং সেই দু-খণ্ডের মধ্য দিয়ে হেঁটেছিল, আমি তাদের সেই রকম করে দেব| 19 চুক্তি ভঙ্গকারীরা আমার সামনে বাছুরকে দু-খণ্ড করে বলি দিয়েছিল| তবু ওরা সেই চুক্তি মানে নি| যিহূদা ও জেরুশালেমের নেতৃবৃন্দ, রাজসভার গুরুত্বপর্তৃ সভাপরিষদ, যাজকগণ এবং সাধারণ মানুষ, প্রত্যেকে আমার সামনে চুক্তি করবার সময় বাছুরটির দুই খণ্ডের মাঝখান দিয়ে হেঁটেছিল| 20 তাই আমি তাদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য শএুবাহিনীর হাতে তুলে দেব| তাদের মৃতদেহ হবে পশু ও শকুনের খাদ্য| 21 যিহূদার রাজা সিদিকিয় ও তার নেতৃবৃন্দকে আমি শএুবাহিনীর হাতে তুলে দেব| যদিও বাবিলের সৈন্যদল জেরুশালেম শহরটি ছেড়ে গেছে, আমি সিদিকিয় এবং তার নেতাদের তাদের হাতে তুলে দেব| 22 কিন্তু আমি আদেশ দেব বাবিলের সেনাদের আবার জেরুশালেমে ফিরে এসে যুদ্ধ করার জন্য| তারা জেরুশালেমকে কবতৃা করে আগুন বালিয়ে দেবে| এবং আমি যিহূদার শহরগুলিকেও ধ্বংস করে দেব| ঐ শহরগুলি একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা|
1 যিহূদার রাজা যখন যিহোয়াকীম তখন যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এলো| যিহোয়াকীম ছিলেন য়োসিযের পুত্র| এই হল প্রভুর বার্তা: 2 “যিরমিয়, যাও রেখবীয পরিবারকে মন্দিরের পাশের ঘরগুলির কোন একটি ঘরে আসবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে এসো| তাদের দ্রাক্ষারস পানের প্রস্তাব দাও|” 3 সুতরাং আমি (যিরমিয়) যাসিনিয়ের কাছে গিয়েছিলাম| যাসিনিয ছিল যিরমিয়নামক এক ব্যক্তির পুত্র এবং হবত্সিনিয়ের পৌত্র| আমি যাসিনিযর অন্য ভাইদের এবং তার সব ছেলেদের রেখবীয পরিবারের সকল সদস্যদের পেয়েছিলাম| 4 তারপর আমি রেখবীয পরিবারকে প্রভুর মন্দিরে নিয়ে এলাম| আমরা হাননের পুত্রের ঘরে গেলাম| হানন ছিল ঈশ্বরের প্রিয মানুষ| তার পিতার নাম ছিল য়িগ্রলিয| পাশের ঘরে থাকতেন যিহূদার যুবরাজগণ| নীচের ঘরে থাকতো শল্লুমের পুত্র মাসেয| মাসেয ছিল মন্দিরের প্রহরী| 5 তখন আমি (যিরমিয়) রেখবীয পরিবারের আমন্ত্রিত সদস্যদের সামনে দ্রাক্ষারসের পাত্র রেখে বললাম, “সামান্য দ্রাক্ষারস পান করুন|” 6 কিন্তু তারা উত্তর দিল, “আমরা কখনও দ্রাক্ষারস পান করি না, কারণ আমাদের পূর্বপুরুষ রেখবীয পুত্র য়িহোনাদব আমাদের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন: ‘তোমরা এবং তোমাদের উত্তরপুরুষ কেউ কখনো দ্রাক্ষারস পান করবে না| 7 তোমরা ঘরবাড়ি তৈরী করবে না,ফসল বুনবে না, দ্রাক্ষার চাষ করবে না| তোমরা কেবল তাঁবুতে থাকবে| তোমরা যদি এগুলি মেনে চলো তাহলে তোমরা যাযাবরের মতো স্থান পরিবর্তন করে দীর্ঘদিন জীবিত থাকবে|’ 8 তাই আমরা রেখবীয পরিবারের সদস্যরা আমাদের পূর্বপুরুষ য়িহোনাদবের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলি| আমরা কেউ দ্রাক্ষারস পান করি না| আমাদের স্ত্রী, ছেলেমেযে কেউ দ্রাক্ষারস পান করে না| 9 আমরা কখনও বাস করার জন্য বাড়ি তৈরী করি না| দ্রাক্ষার চাষ করি না, ফসল ফলানোর জন্য বীজ বুনি না| 10 আমরা আমাদের পূর্বপুরুষ য়িহোনাদবের নির্দেশ পালন করেছি এবং আমরা তাঁবুতেই বসবাস করেছি| 11 কিন্তু যখন নবূখদ্রিত্সর, বাবিলের রাজা যিহূদা আক্রমণ করেছিল, আমরা বলেছিলাম, ‘বাবিলীয এবং আর্মেনীয সৈন্যদের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য আমাদের জেরুশালেম শহরে যাওয়া যাক|’ তাই আমরা জেরুশালেমে পালিয়ে গিয়েছিলাম এবং তারপর থেকে ওখানেই থেকেছি|” 12 তখন প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| 13 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বললেন: “যিরমিয় যাও| যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের গিয়ে বলো: তোমাদের শিক্ষা হওয়া উচিত্ এবং তোমরা আমার বার্তা পালন করবে|” 14 “রেখব তার উত্তরপুরুষদের নির্দেশ দিয়েছিল দ্রাক্ষারস পান না করতে| এবং সেই নির্দেশ আজও রেখবীয পরিবারের সদস্যরা পালন করে আসছে| কিন্তু আমি প্রভু এবং আমি যিহূদার লোকরা, তোমাদের বারবার বার্তা পাঠানো সত্ত্বেও তোমরা আমাকে অগ্রাহ্য করেছ এবং অমান্য করেছ| 15 যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের কাছে বারবার আমার অনুচর এবং ভাব্বাদীদের পাঠিয়েছি| তারা তোমাদের বলেছে: ‘অসত্ হওয়া বন্ধ করো| ভালো কাজ কর| অন্য দেবতাদের অনুসরণ করো না ও তাদের সেবা করো না| তোমরা যদি আমাকে মেনে চলতে তাহলে তোমরা এই দেশে বসবাস করতে পারতে, য়ে দেশ তোমাদের পূর্বপুরুষকে আমি দিয়েছিলাম|’ কিন্তু তোমরা আমার বার্তাকে পাত্তাই দিলে না| 16 য়িহোনাদবের নির্দেশ তার উত্তরপুরুষরা মেনে চলেছিল কিন্তু যিহূদার লোকরা আমাকে মান্য করেনি|” 17 তাই প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বললেন: “আমি বলেছিলাম যিহূদা ও জেরুশালেমে লোকেদের ওপর বহু মারাত্মক ঘটনা ঘটবে| শীঘ্রই আমি সেগুলি ঘটাবো কারণ আমি ওই লোকদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিল| আমি তাদের চিত্কার করে ডেকেছিলাম কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি|” 18 যিরমিয়, রেখবীয পরিবারকে বলেছিল, “সর্বশক্তিমান প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ য়িহোনাদবের সব নির্দেশ মেনে চলেছো| তোমরা য়িহোনাদবের শিক্ষাকেই অনুসরণ করে গিয়েছো| 19 তাই সর্বশক্তিমান প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন সেখানে সর্বদাই রেখবের পুত্র য়িহোনাদবের উত্তরপুরুষদের কোন এক জন আমাকে সেবা করবার জন্য আমার সামনে থাকবে|”‘
1 যিহূদার রাজা য়োশিযের পুত্র যিহোয়াকীম যখন তার রাজত্বকালের চতুর্থ বছরে পা দিয়েছে তখন প্রভুর এই বার্তা যিরমিয়র কাছে এসেছিল| এই হল প্রভুর বার্তা: 2 “যিরমিয়, আমি তোমাকে য়ে সমস্ত বাণী শুনিয়েছি তা সব একটি পাকানো পুঁথিতে লিখে রাখো| যিহূদা, ইস্রায়েল এবং অন্যান্য দেশগুলি সম্বন্ধে যা যা বলেছি তাও লিখে রাখো| য়োশিযের রাজত্বকাল থেকে আজ পর্য়ন্ত য়ে কথা বলেছি তার সব অক্ষরে অক্ষরে লিখে রাখো তোমার খাতায়| 3 যিহূদার পরিবারের জন্য আমি য়ে সমস্ত বাজে জিনিষের পরিকল্পনা করেছি তা হয়তো তারা জানতে পারবে এবং হয়তো তারা খারাপ কাজ করা বন্ধ করবে| যদি তারা তাই করে তাহলে আমি তাদের ক্ষমা করব| ক্ষমা করে দেব তাদের সমস্ত পাপ|” 4 তাই যিরমিয় বারূককে ডাকল| বারূক ছিল নেরিযের পুত্র| যিরমিয় প্রভুর বার্তা বলছিল| যিরমিয় যখন সেই বার্তাগুলি বলছিল তখন বারূক তা খাতায় লিখে নিচ্ছিল| 5 তখন যিরমিয় বারূককে বলেছিল, “আমি প্রভুর উপাসনা গৃহে য়েতে পারব না| আমার সেখানে যাওয়া নিষেধ| 6 তাই আমি চাই তুমি প্রভুর উপাসনা গৃহে যাও| সেখানে একটি উপবাসের দিন যাও এবং এই পুঁথি থেকে প্রভুর কথাগুলি লোকেদের পড়ে শোনাও| আমি যা বলেছি তুমি তা লিখেছো এগুলো সবই প্রভুর বার্তা| যাও গিয়ে যিহূদার বিভিন্ন শহর থেকে জেরুশালেমে আসা সমস্ত লোককে এই বার্তা খাতা থেকে পাঠ করে শোনাও| 7 হয়তো লোকরা প্রভুর কাছে এসে সাহায্য চাইবে| হয়তো তারা তাদের অসত্ কাজগুলি করা বন্ধ করবে| প্রভু আগেই ঘোষণা করেছিলেন য়ে তিনি তাদের ওপর প্রচণ্ড রুদ্ধ হয়ে আছেন|” 8 সুতরাং বারূক তাই করল যা তাকে ভাব্বাদী যিরমিয় করতে বলেছিল| সুরূক প্রভুর উপাসনাগৃহে খাতায় লিপিবদ্ধ করা প্রভুর বার্তা উচ্চস্বরে পাঠ করতে লাগল| 9 যিহোয়াকীমের রাজত্বকালের পঞ্চম বছরের নবম মাসে উপবাসের একটি দিন ঘোষিত হয়েছিল| জেরুশালেমের নাগরিক এবং যিহূদার সমস্ত শহর থেকে জেরুশালেম শহরে আসা প্রত্যেক লোককে প্রভুর সামনে উপবাস করতে হবে| 10 সে সময় বারূক খাতায় লেখা যিরমিয়র মুখ থেকে উচ্চারিত প্রভুর বার্তা পড়ে শোনাচ্ছিল উপাসনা গৃহে উপস্থিত লোকেদের| বারূক তখন থাকতো গমরিযের ঘরে| ঘরটি ছিল উপাসনাগৃহের নতুন ফটকের কাছে| গমরিযের পিতা ছিল শাফন| গমরিয উপাসনাগৃহের লিপিকার ছিল| 11 বারূক যখন পড়ছিল তখন গমরিযের পুত্র মীখায় শুনছিল| গমরিয ছিল শাফনের পুত্র| 12 মীখায় যখন পুঁথির সব বার্তা শুনল, তখন সে রাজপ্রাসাদের সচিবের ঘরে গেল| সেই ঘরে তখন রাজপরিবারের সমস্ত সভাসদরা উপস্থিত ছিলেন| উপস্থিত সভাসদদের নামগুলি হল: রাজার আপ্ত সহায়ক ইলীশামা, শময়িয়ের পুত্র দলায, অক্বোরের পুত্র ইল্নাথন, শাফনের পুত্র গমরিয, হনানিয়ের পুত্র সিদিকিয় এবং অন্যান্য রাজসভার সভাসদরাও সেই ঘরে উপস্থিত ছিলেন| 13 পুঁথি থেকে বারূক যা কিছু পড়ে শুনিয়েছিল তা সব মীখায় গিয়ে সভাপারিষদদের বলেছিল| 14 তখন সেই সভাসদরা বারূকের কাছে যিহূদীকে পাঠাল| যিহূদী ছিল নথনিয়ের পুত্র এবং শেলিমিযের পৌত্র| শেলিমিযের পিতার নাম ছিল কূশি| যিহূদী বারূককে বলেছিল: “তুমি য়ে খাতাটি পাঠ করেছিলে সেই খাতাটি নিয়ে আমার সঙ্গে চলো|”বারূক সেই খাতা সঙ্গে নিয়ে যিহূদীর সঙ্গে সভাপরিষদদের কাছে গেল| 15 রাজার সেই সভাষদরা বারূককে বললেন, “এখানে বসো এবং পুঁথিতে লেখা বাণীগুলি পড়ে শোনাও|”সুতরাং বারূক খাতায় লেখা বাণীগুলি পাঠ করতে শুরু করল| 16 রাজার সভাসুরা সমস্ত বাণীগুলি শুনলেন এবং তারপর তারা ভয়ে একে অন্যের দিকে তাকালেন| তাঁরা বারূককে বললেন, “রাজা যিহোয়াকীমকে আমাদের এই খাতার সম্বন্ধে জানানো উচিত্|” 17 তখন তাঁরা বারূককে একটি প্রশ্ন করলেন, “আচ্ছা বারূক বলো তো এই খাতায় য়ে বাণী তুমি লিখেছো তা তুমি কোত্থেকে পেলে? যিরমিয় তোমাকে য়ে সব জিনিসের কথা বলেছিল সে সব কি তুমি লিখেছিলে?” 18 বারূক উত্তর দিল, “হ্যাঁ! যিরমিয় আমাকে বলে গিয়েছে আর কালি দিয়ে সেই বাণী খাতায় আমি লিখে নিয়েছি|” 19 তখন রাজার পারিষদরা বারূককে বললেন, “তুমি আর যিরমিয় গিয়ে আত্মগোপন করে থাকো কিন্তু কোথায় আত্মগোপন করবে তা কাউকে জানিও না|” 20 তখন পারিষদরা ইলীশামার ঘরে সেই খাতাটি তুলে রেখে রাজা যিহোয়াকীমের কাছে গিয়ে সব খুলে বললেন| 21 সব শুনে রাজা যিহোয়াকীম খাতাটি নিয়ে আসার জন্য যিহূদীকে পাঠালেন| যিহূদী ইলীশামার ঘর থেকে পুঁথিটি নিয়ে এলো| তারপর সে রাজাকে এবং তার চার পাশের দাঁড়িয়ে থাকা কর্মচারীদের পুঁথিতে লেখা বাণীগুলি পড়ে শোনাতে লাগল| 22 এটা ঘটেছিল নবম মাসে, সুতরাং রাজা যিহোয়াকীম তাঁর শীতকালীন আবাসে বসেছিলেন| ঘরকে উসুরাখার জন্য তার সামনে তখন আগুন জ্বলছে| 23 যিহূদী আস্তে আস্তে খাতা থেকে লিপিবদ্ধ করা বাণী পড়ে য়েতে থাকল| কিন্তু সে দুই বা তিন অনুচ্ছেদ পড়ার পরই রাজা তার কাছ থেকে খাতা ছিনিয়ে নিয়ে ছুরি দিয়ে খাতা থেকে পাতাগুলি কেটে কেটে আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দিতে লাগলেন| এই ভাবে পুরো খাতাটাই পুড়ে ছাই হয়ে গেল| 24 এবং রাজা যিহোয়াকীম ও তাঁর অনুচররা এই বাণী শুনেও ভীত হল না| শোকের চিহ্ন হিসেবে তারা তাদের কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে ফেলল না| 25 ইল্নাথন, দলায এবং গমরিয চেষ্টা করেছিল রাজার সঙ্গে কথা বলার যাতে তিনি খাতাটি না পোড়ান| কিন্তু রাজা তাদের কথা শোনেননি| 26 বরং উলেট রাজা য়িরহমেল, সরায় এবং শেলিমিযকে আদেশ দিলেন ভাব্বাদী যিরমিয় এবং লিপিকার (লেখক) বারূককে গ্রেপ্তার করতে| য়িরহমেল হল যুবরাজ ও সরায় হল অস্রীযেলের পুত্র এবং শেলিমিয হল অব্দিয়েলের পুত্র| কিন্তু তারা কেউই বারূক এবং যিরমিয়কে খুঁজে বার করতে পারল না| কারণ প্রভু তাদের লুকিয়ে রেখেছিলেন| 27 যিহোয়াকীম খাতাটি পুড়িয়ে ফেলার পর প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| ঐ খাতাতেই লিপিবদ্ধ ছিল প্রভুর সমস্ত বার্তা যা যিরমিয় বলে গিয়েছিল আর বারূক লিপিবদ্ধ করেছিল| ঐ খাতার প্রতিটি পাতায এই ছিল সেই বার্তা যা পুনরায় প্রভু যিরমিয়কে বললেন: 28 “যিরমিয় আরেকটি খাতা নাও এবং সমস্ত বার্তাগুলি পুনরায় লিপিবদ্ধ করো| 29 যিরমিয়, আবার যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমকে একথাগুলি বলো| প্রভু যা বললেন: ‘যিহোয়াকীম তুমি খাতাটি পুড়িয়ে ফেলে বলেছিলে, “যিরমিয় কেন একথা লিখলো য়ে বাবিলের রাজা নিশ্চিতভাবেই এসে এই দেশ ধ্বংস করে দেবে? কেন সে লিখল য়ে বাবিলের রাজা এই দেশের মানুষ এবং পশু প্রাণী সবাইকে হত্যা করবে?” 30 তাই প্রভু যিহূদার রাজা যিহোয়াকীম সম্বন্ধে বললেন: যিহোয়াকীমের উত্তরপুরুষরা কেউ দাযূদের সিংহাসনে বসতে পারবে না| এমনকি যিহোয়াকীম তার মৃত্যুর পরে সত্কারের সময় রাজকীয মর্য়াদাও পাবে না| তার মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে মাঠের মধ্যে| দিনের প্রখর তাপ ও রাতের প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যে খোলা মাঠে তার মৃতদেহ পড়ে থাকবে| 31 আমি প্রভু, যিহোয়াকীমকে তার সন্তানদের এবং তার পারিষদদেরও শাস্তি দেব| আমি তাদের প্রত্যেককে শাস্তি দেব কারণ তারা অসত্ এবং মন্দ| আমি প্রতিশ্রুতি করেছি তাদের শাস্তি দেব| আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জেরুশালেম এবং যিহূদার লোকদের জীবনে ভয়ঙ্কর প্রলয ঘটানোর জন্য| সমস্ত অমঙ্গল বয়ে আনব তাদের জীবনে| তারা আমার কথা শোনেনি|”‘ 32 তখন যিরমিয় অন্য একটি পুঁথি নিল এবং সেটি নেরিযর পুত্র, লেখক বারূককে দিল লিপিবদ্ধ করার জন্য| যিরমিয় যা যা বলে য়েতে থাকল বারূক তা লিপিবদ্ধ করতে থাকল| রাজা যিহোয়াকীম য়ে বার্তাগুলি পুড়িয়ে দিয়েছিল সেগুলি আবার নতুন খাতায় লিপিবদ্ধ করতে থাকল বারূক| এরই সঙ্গে য়োগ হল আরো নতুন নতুন বার্তা|
1 নবূখদ্রিত্সর ছিল বাবিলের রাজা| যিহোয়াকীমের পুত্র য়িকনিয়ের পরিবর্তে সিদিকিয়কে যিহূদার রাজা হিসেবে নিযুক্ত করেছিল নবূখদ্রিত্সর| সিদিকিয় ছিল রাজা য়োশিযের পুত্র| 2 কিন্তু সিদিকিয় ভাব্বাদী যিরমিয় মারফত্ প্রচারিত প্রভুর বার্তাকে গুরুত্ব দেয়নি| এবং সিদিকিযের ভৃত্যগণ ও যিহূদার লোকরাও প্রভুর বার্তাকে গুরুত্ব দেয়নি| 3 সিদিকিয় যিহূখল এবং যাজক সফনিয়কে যিরমিয়র কাছে পাঠিয়েছিল একটি বার্তা দিয়ে| যিহূখল ছিল শেলিমিযের পুত্র এবং সফনিয় ছিল মাসেযের পুত্র| বার্তাটি ছিল: “যিরমিয়, আমাদের জন্য প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো|” 4 সেই সময় যিরমিয়কে তখনও কারাগারে বন্দী করা হয়নি, তাই লোকদের মধ্যে য়ে কোন জায়গায় য়েতে তার বাধা ছিল না| 5 একই সময় ফরৌণের সৈন্যরা মিশর ছেড়ে যিহূদার দিকে রওনা দিয়েছিল| এবং বাবিলের সৈন্যদল জেরুশালেমকে অধিকার করবার জন্য তাকে ঘিরে ফেলেছিল| কিন্তু যখন তারা শুনল ফরৌণের সৈন্যরা মিশর ছেড়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে তখন তারা জেরুশালেম ত্যাগ করে মিশরের সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আগুযান হয়েছিল| 6 ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এলো: 7 “প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল: ‘যিহূখল ও সফনিয়, তোমাদের য়ে রাজা সিদিকিয় আমার কাছে পাঠিয়েছে তা আমি জানি| যাও সিদিকিয়র কাছে ফিরে গিয়ে বলো: ফরৌণের সৈন্যরা মিশর ছেড়ে বাবিলের সৈন্যদের হাত থেকে তোমাদের বাঁচাতে এলেও তারা কিন্তু আবার মিশরেই ফিরে যাবে| 8 তারপর বাবিলের সৈন্য আবার এখানে এসে জেরুশালেম আক্রমণ করবে| তখন বাবিলের সৈন্য জেরুশালেম দখল করে নেবে এবং তাতে আগুন লাগিয়ে দেবে|’ 9 প্রভু এরপর যা বললেন: ‘জেরুশালেমের লোকরা, তোমরা নিজেরাই নিজেদের বোকা বানিও না| নিজেদের একথা বলো না, “বাবিলের সৈন্যরা নিশ্চিত ভাবে আমাদের একলা ছেড়ে চলে যাবে|” তারা তা করবে না| 10 ওহে জেরুশালেমবাসী, তোমরা যদি বাবিলের সৈন্যদের যুদ্ধে পরাজিতও করতে পারতে তাহলেও তাদের তাঁবুতে কিছু আহত সৈনিক পড়ে থাকতো| এমনকি সেই আহত সৈনিকরাই উঠে এসে এই জেরুশালেম শহর পুড়িয়ে দিতে সক্ষম হতো|”‘ 11 বাবিলের সৈন্যরা যখন জেরুশালেম ত্যাগ করে মিশরের ফরৌণের সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল তখন 12 বিন্যামীন দেশেযাবার জন্য যিরমিয় জেরুশালেম ত্যাগ করল| সে এই শহরে ভ্রমণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল| সে সেখানে য়েতে চেয়েছিল পারিবারিক সম্পত্তি ভাগ বাটোযারার জন্য| 13 কিন্তু যিরমিয় যখন জেরুশালেমের বিন্যামীন ফটকে পৌঁছেছিল তখনই তাকে ঐ ফটকের দায়িত্বে থাকা প্রধান রক্ষী গ্রেপ্তার করেছিল| সেই প্রধান রক্ষীর নাম ছিল য়িরিয| য়িরিয ছিল শেলিমিযের পুত্র এবং হনানিয়ের পৌত্র| য়িরিয যিরমিয়কে গ্রেপ্তার করার পর বলেছিল, “যিরমিয় তুমি আমাদের ত্যাগ করে বাবিলের পক্ষে য়োগ দিতে যাচ্ছিলে|” 14 যিরমিয় য়িরিযকে বলেছিল, “তোমার অভিযোগ সত্যি নয়, আমি বাবিলের পক্ষে য়োগ দিতে যাচ্ছিলাম না|” কিন্তু য়িরিয যিরমিয়র সেই আপত্তি শুনতে অস্বীকার করেছিল এবং সে যিরমিয়কে গ্রেপ্তার করে রাজার সভাপরিষদদের সামনে এনে হাজির করেছিল| 15 5ঐ সভাপরিষদরা যিরমিয়র প্রতি প্রচণ্ড রুদ্ধ হয়েছিলেন| সভাসদরা যিরমিয়কে প্রহার করে কারাগারে বন্দী করার নির্দেশ দিয়েছিলেন| য়োনাথন নামক এক ব্যক্তির বাড়িটিকেই কারাগার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল| য়োনাথন ছিল যিহূদার রাজার আজ্ঞাবাহী লেখক 16 যিরমিয়কে তারা সেই বাড়ির ভূগর্ভস্থ একটি অন্ধকার কারা কক্ষে বন্দী করে রেখেছিল| কক্ষটি ছিল মাটির নীচে| যিরমিয়কে সেখানে দীর্ঘদিন রাখা হয়েছিল| 17 দীর্ঘদিন পর রাজা সিদিকিয় যিরমিয়কে তাঁর প্রাসাদে নিয়ে এসে একান্তে তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| রাজা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “প্রভুর আর কোন বার্তা আছে?”যিরমিয় উত্তর দিয়ে বলেছিল, “হ্যাঁ, প্রভুর বার্তা হল, সিদিকিয় তোমাকে বাবিলের রাজার হাতে তুলে দেওয়া হবে|” 18 যিরমিয় এরপর রাজা সিদিকিয়কে বলেছিল, “আমার অন্যায়টা কি? আমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করবার মত কি এমন ভুল কাজ করেছি আপনার বিরুদ্ধে, আপনার কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অথবা জেরুশালেমের লোকদের বিরুদ্ধে? 19 রাজা সিদিকিয় কোথায় এখন আপনার ভাব্বাদীরা? এই ভাব্বাদীরা আপনার কাছে ভুল বার্তা প্রচার করেছিল| তারা বলেছিল, ‘বাবিলের রাজা আপনাকে এবং ঐ দেশ যিহূদাকে আক্রমণ করবে না|’ 20 কিন্তু আমার প্রভু, যিহূদার রাজা এখন অনুগ্রহ করে আমার কথা শুনুন| আমাকে অনুগ্রহ করে অনুরোধ করতে দিন| এই হল আমার অনুরোধ: আমাকে আর এই লেখক য়োনাথনের বাড়িতে কারাবন্দী করে রাখবেন না| যদি আপনি আবার আমাকে সেখানে পাঠান, আমি সেখানে মারা যাব|” 21 সুতরাং রাজা সিদিকিয় আদেশ দিয়েছিলেন য়ে, এবার থেকে যিরমিয়কে প্রহসুর পাহারায় মন্দির় চত্বরে বন্দী হয়ে থাকতে হবে এবং রাজার আদেশ ছিল যিরমিয়কে রুটি দেওয়া হবে রাস্তার হকারদের কাছ থেকে| শহরে যতদিন পর্য়ন্ত রুটি পাওয়া যাবে ততদিন পর্য়ন্ত যিরমিয়কে রুটি দেওয়া হবে| তাই যিরমিয়কে উঠোনে রক্ষীর অধীনে রাখা হয়েছিল|
1 যিরমিয় য়ে বার্তাগুলি প্রচার করেছিল সেগুলি রাজার কয়েকজন সভাপরিষদরা শুনতে পেয়েছিলেন| তাঁরা হলেন: মত্তনের পুত্র শফটিয, পশ্হূরের পুত্র গদলিয়, শেলিমিযের পুত্র যিহূখল এবং মল্কিযের পুত্র পশ্হূর| যিরমিয় সমস্ত লোকদের এই বাণী বলেছিল: 2 “প্রভু যা বলেছেন তা হল এই: ‘জেরুশালেমে বসবাসকারী প্রত্যেকে হয় তরবারির আঘাতে নয় অনাহারে বা ভয়ঙ্কর মহামারীতে মারা যাবে| কিন্তু য়ে ব্যক্তি নিজেকে বাবিলের সৈন্যবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করবে সে বেঁচে থাকবে|’ 3 এবং প্রভু যা বলেছেন তা হল: ‘জেরুশালেম শহর বাবিলের রাজার সৈন্যবাহিনীকে দিয়ে দেওয়া হবে এবং বাবিলের রাজাই দখল করবে এই শহর|”‘ 4 রাজার ঐ সমস্ত সভাপারিষদরা যিরমিয়র প্রচারিত ঐ বাণী শুনে রাজা সিদিকিযের কাছে গিয়ে বলল, “যিরমিয়কে অবিলম্বে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত্| সে আমাদের সৈন্যদের নিরুত্সাহিত করছে| তার কথা দিয়ে সে সমস্ত নাগরিককে নিরুত্সাহিত করেছে| যিরমিয় চায় না আমাদের ভাল কিছু হোক| সে শুধু জেরুশালেমের লোকদের ক্ষতি কামনা করে|” 5 এই সব কথা শুনে রাজা সিদিকিয় ঐ সভাপরিষদদের বলল, “যিরমিয় পুরোপুরি তোমাদের নিযন্ত্রণাধীন| সুতরাং তোমরা কিছু করতে চাইলে আমি তোমাদের থামাতে পারি না|” 6 সুতরাং সভাসদরা যিরমিয়কে নিয়ে গেল মল্কিযের চৌবাচচায় ফেলে দেসু়ার জন্য (মল্কিয ছিল রাজপুত্র)| চৌবাচচাটি ছিল উপাসনালয চত্বরে, সেখানে থাকতো রাজার প্রহরীরা| সভাসদরা যিরমিয়কে দড়ি দিয়ে বাঁধল এবং জলাধারে ফেলে দিল| জলাধারটিতে জল ছিল না, ছিল শুধু কাদা| এবং যিরমিয় সেই কাদার ভেতরে ডুবে গেল| 7 কিন্তু এবদ-মেলক নামক এক ব্যক্তি শুনতে পেয়েছিল য়ে সভাসদরা যিরমিয়কে জলাধারে ফেলে দিয়েছে| এবদ-মেলক ছিল একজন কূশ দেশীয (ইথিওপিযার) ব্যক্তি এবং সে ছিল রাজার প্রাসাদের সেবক, একজন নপুসংক| রাজা সিদিকিয় তখন বসেছিল বিন্যামীন ফটকে| তাই এবদ-মেলক রাজার সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে রওনা দিল| 8 রাজাকে সে বলেছিল, “আমার মনিব এবং মহারাজ, ঐ সভাসদরা অসত্ উপায় অবলম্বন করেছে ভাব্বাদী যিরমিয়র বিরুদ্ধে| তারা যিরমিয়কে জলাধারে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে| তারা তাকে সেখানে মরবার জন্য ছেড়ে রেখেছে|” 9 10 তখন রাজা সিদিকিয় এবদ-মেলককে আদেশ দিয়েছিল, “এবদ-মেলক রাজপ্রাসাদ থেকে তিন জনকে সঙ্গে করে নিয়ে যাও এবং জলাধার থেকে যিরমিয়কে সে মরে যাবার আগে তুলে নাও|” 11 এবদ-মেলক তিনজন লোক সঙ্গে নিল কিন্তু তার আগে সে রাজপ্রাসাদের নীচে ভাঁড়ার ঘরে গিয়ে কিছু পুরানো বস্ত্র ও কিছু জীর্ণ বস্ত্রখণ্ড জোগাড় করল| তারপর জলাধারের কাছে গিয়ে সে ঐ জীর্ণ বস্ত্রখণ্ডগুলি দড়ির সঙ্গে নীচে নামিয়ে দিয়ে 12 যিরমিয়র উদ্দেশ্যে বলল, “যিরমিয় এই জীর্ণ বস্ত্রখণ্ডগুলি তুমি তোমার কাঁধের নীচে ভাল করে জড়িয়ে নাও| আমরা যখন দড়ির সাহায্যে তোমায় টেনে তুলব তখন ঐ বস্ত্রখণ্ডগুলি দড়ির আঘাত থেকে তোমায় রক্ষা করবে|” এবদ-মেলকের কথা মতোই যিরমিয় বস্ত্রখণ্ডগুলি বাহুতে জড়িয়ে নিল| 13 তারপর তারা তাকে দড়িগুলো দিয়ে টেনে তুলল এবং জলাধারের থেকে বাইরে আনল| যিরমিয়কে আবার রক্ষীদের অধীনে উঠোনে রেখে দেওয়া হয়েছিল| 14 রাজা সিদিকিয় ভাব্বাদী যিরমিয়কে তার কাছে নিয়ে আসার জন্য এক জনকে পাঠাল| যিরমিয়কে প্রভুর মন্দিরের তৃতীয় প্রবেশ পথে আনা হয়েছিল| রাজা বললেন, “যিরমিয় আমি তোমাকে কয়েকটি কথা জিজ্ঞেস করব| তুমি কিন্তু আমার কাছে কোন কিছু লুকোবে না, সব কথা আমাকে খোলাখুলি বলবে|” 15 যিরমিয় সিদিকিয়কে বলল: “আমি যদি আপনার কথার উত্তর দিই, আপনি হয়ত আমায় মেরে ফেলবেন| আমি যদি আপনাকে উপদেশও দিই, আপনি আমার কথা শুনবেন না|” 16 কিন্তু রাজা সিদিকিয় গোপনে এই বলে যিরমিয়র কাছে একটি প্রতিশ্রুতি করলেন, “যিরমিয়, প্রভু হচ্ছেন সেই জন যিনি আমাদের জীবনের রুটি দেন| আমি প্রভুর নামে শপথ করছি, আমি তোমায় মেরে ফেলব না এবং যারা তোমায় মারতে চায় সেই কর্মচারীদের হাতেও তুলে দেব না|” 17 তখন যিরমিয় রাজা সিদিকিয়কে বলল, “প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘যদি আপনি বাবিলের রাজার সভাসদদের হাতে আত্মসমর্পণ করেন তাহলে জীবন রক্ষা পাবে এবং জেরুশালেমকেও আগুনে পোড়ানো হবে না| আপনার পরিবারও জীবিত থাকবে| 18 কিন্তু যদি আপনি আত্মসমর্পণ না করেন, বাবিলীয সৈন্যদল জেরুশালেমকে পুড়িয়ে ছাই করে দেবে এবং আপনি তাদের দ্বারা বন্দী হবেন|”‘ 19 কিন্তু রাজা সিদিকিয় যিরমিয়কে বললেন, “কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি যিহূদার সেই সমস্ত লোকদের যারা ইতিমধ্যেই বাবিলের পক্ষ নিয়েছে| আমি ভীত কারণ বাবিলের সৈন্যরা আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে যিহূদার ঐ মানুষগুলোর হাতে তুলে দেবে| তারা আমার ওপর নিদারুণ অত্যাচার চালাবে|” 20 কিন্তু উত্তরে যিরমিয় বলল, “বাবিলের সৈন্যরা আপনাকে যিহূদার লোকদের হাতে তুলে দেবে না| রাজা সিদিকিয়, আমি যা বলছি তা করে প্রভুকে মান্য করুন| তাহলে আপনার ভাল হবে| আপনি রক্ষা পাবেন| 21 কিন্তু আপনি যদি বাবিলের সৈন্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করেন তাহলে কি হবে তা প্রভু আমাকে আগেই দেখিয়েছেন| প্রভু বলেছেন: 22 রাজবাড়ির সমস্ত মহিলাকে বাবিলের গুরুত্বপূর্ণ সভাসদদের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে| রাজমহিলাগণ আপনাকে নিয়ে মজা করে গান গাইবে| ওরা গাইবে:“তোমার বন্ধুরা যাদের তুমি বিশ্বাস করতে, তোমাকে ভুল পথে চালিত করেছে| তোমার পা কাদায় আটকে গিয়েছিল আর তারা তোমায় একা ফেলে পালিয়ে গিয়েছে|” 23 “তোমার স্ত্রীদের ও সন্তানদের বাবিলের সৈন্যরা ধরে নিয়ে আসবে| তুমিও পালাতে পারবে না| তুমি বন্দী হবে আর জেরুশালেমকে পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হবে|” 24 তখন সিদিকিয় যিরমিয়কে বলে উঠল, “কাউকে বলো না য়ে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলেছি| যদি তুমি বলে দাও তাহলে হয়তো তোমাকে হত্যা করা হবে| 25 ঐ সভাসদরা হয়তো জানতে পারবে য়ে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলেছি| তারা তোমার কাছে এসে বলবে, ‘যিরমিয় রাজাকে কি বলেছো তা আমাদের বলো এবং রাজা তোমাকে কি বলেছে তাও আমাদের বলো| সত্ভাবে আমাদের সব কিছু জানাও না হলে তোমাকে হত্যা করব|’ 26 যদি সভাসদরা এরকম বলে, তাহলে তোমার তাদের বলা উচিত্: ‘আমি রাজার কাছে ভিক্ষা করেছিলাম আমাকে আবার য়োনাথনের বাড়ীর নীচে অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ না করতে, নাহলে আমি সেখানে মারা যাব|”‘ 27 তাই ঘটল| ঐ সভাসদরা জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য যিরমিয়র কাছে এলো| সুতরাং যিরমিয় তাদের তাই বলল যা রাজা তাকে বলার জন্য আদেশ দিয়ে ছিলেন যখন ঐ সভাসদরা যিরমিয়কে একা ছেড়ে দিল| কেউ জানতে পারল না রাজা এবং যিরমিয়র মধ্যে কি কথা হয়েছিল| 28 অবশেষে যিরমিয় মন্দির চত্বরে প্রহরীদের নজরবন্দী হয়ে রয়ে গেল যতদিন পর্য়ন্ত না জেরুশালেম দখল হয় ততদিন পর্য়ন্ত|
1 এই ভাবে জেরুশালেম দখল হল: যিহূদার ওপর রাজা সিদিকিয়র নবম বছরের রাজত্বের দশম মাসে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর তাঁর সৈন্যবাহিনীসহ জেরুশালেম শহর অধিগ্রহণের জন্য বেরিয়েছিলেন| তারা শহরটিকে অধিকার করবার জন্য তাকে ঘিরে ফেলেছিল| 2 এবং সিদিকিয়র রাজত্ব কালের একাদশতম বছরের চতুর্থ মাসের নবম দিনে বাবিলের সৈন্যরা জেরুশালেমের প্রাচীর ভেঙে ফেলেছিল| 3 তখন বাবিলের রাজার সভাসদরা জেরুশালেম শহরে প্রবেশ করেছিল| তারা এসে বসেছিল শহরের মাঝখানের ফটকে| সেই সভাসদদের নাম ছিল: সমগর জেলার রাজ্যপাল নের্গল-শরেত্সর, সমগরনবো নামের এক উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী এবং আরও অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পারিষদবৃন্দও সেখানে উপস্থিত ছিল| 4 বাবিল থেকে আসা ঐ সভাসদদের সিদিকিয় দেখেছিলেন| অতএব, সেই রাত্রেই তিনি এবং তাঁর বিশ্বস্ত সৈন্যরা রাজার বাগানের মধ্যে দিয়ে একটি গোপন ফটক পেরিযে, দুটি প্রাচীরের মধ্যে দিয়ে জেরুশালেম থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন| তাঁরা য়র্দন উপত্যকার দিকে পালিয়েছিলেন| 5 বাবিলের সৈন্যদল সিদিকিয় ও তাঁর সৈন্যদের তাড়া করেছিল এবং তাদের য়িরীহোর সমতলভূমিতে গ্রেপ্তার করেছিল| গ্রেপ্তারের পর তাদের নিয়ে আসা হয় বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের কাছে| নবূখদ্রিত্সর তখন ছিলেন হমাত্ প্রদেশের রিব্লা শহরে| সেখানে তিনি ঠিক করেছিলেন সিদিকিয়র প্রতি কি করা হবে| 6 এই রিব্লা শহরেই সিদিকিয়র চোখের সামনেই সিদিকিয়র পুত্রদের নবূখদ্রিত্সর হত্যা করেছিলেন| এবং যিহূদার রাজসভার সমস্ত সভাপারিষদবৃন্দকেও হত্যা করা হয়েছিল| 7 নবূখদ্রিত্সর সিদিকিয়র চোখ দুটো উপড়ে ফেলেছিলেন, তাকে পিতলের শেকল দিয়ে শৃঙ্খলিত করেছিলেন এবং তাকে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন| 8 বাবিলের সৈন্যরা রাজপ্রাসাদ এবং সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি বালিয়ে দিয়েছিল এবং তারা জেরুশালেমের পাঁচিল ভেঙে গুঁড়িযে দিয়েছিল| 9 বাবিলের রাজার বিশেষ রক্ষীদের প্রধান নবূষরদন যারা তখনও বেঁচে ছিল তাদের সবাইকে বন্দী করেছিল এবং বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল| যারা আগেই আত্মসমর্পণ করেছিল তাদেরও নবূষরদন বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল| 10 কিন্তু যিহূদার কিছু গরীব লোককে নবূষরদন বন্দী করে নিয়ে না গিয়ে বরং তাদের সে জমি ও দ্রাক্ষাক্ষেত দান করে দিয়েছিল| 11 কিন্তু নবূখদ্রিত্সর যিরমিয়র ব্যাপারে নবূষরদনকে কিছু আদেশ দিয়েছিলেন| নবূষরদন ছিল নবূখদ্রিত্সরের বিশেষ দেহরক্ষীদের প্রধান| আদেশ ছিল: 12 “যিরমিয়কে খুঁজে বের করো এবং ভালো করে তার দেখাশোনা কর| তাকে আঘাত করো না| সে যা চায় তাই তাকে দাও|” 13 সুতরাং নবূষরদন, নবূখদ্রিত্সরের বিশেষ রক্ষীদের প্রধান, বাবিলের বিশেষ রক্ষসুদর মুখ্য আধিকারিক নবূশস্বন, উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী নের্গল-শরেত্সর এবং অন্যান্য উচ্চপর্য়াযের আধিকারিকদের যিরমিয়র সন্ধানে পাঠানো হয়েছিল| 14 তারা যিরমিয়কে উপাসনালয চত্বরে খুঁজে পেয়েছিল| সেখানে তাকে নজরবন্দী করে রেখেছিল যিহূদার রাজার রক্ষীরা| ঐ আধিকারিকরা যিরমিয়কে গদলিযের হাতে তুলে দিয়েছিল| গদলিয় ছিল অহীকামের পুত্র এবং শাফনের পৌত্র| গদলিয়কে নির্দেশ দেওয়া ছিল যিরমিয়কে তার নিজের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য| সুতরাং যিরমিয় তার নিজের বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরে এসেছিল| 15 মন্দির চত্বরে প্রহরীদের পাহারায় যিরমিয় যখন বন্দী ছিল তখন তার কাছে প্রভুর বার্তা এসেছিল| 16 এই ছিল সেই বার্তা: “যাও এবং কূশীয় এবদ-মেলককে বল: ‘প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন: জেরুশালেম সম্বন্ধে আমার বাণী খুব শীঘ্রই আমি সত্যে পরিণত করব| আমার বার্তা সত্য হবে বিপর্য়যের মধ্যে দিয়ে, ভালো জিনিষ দিয়ে নয়| তোমরা তা তোমাদের নিজেদের চোখেই দেখতে পাবে| 17 কিন্তু এবদ-মেলক, আমি তোমাকে সেদিন রক্ষা করব|’ যাদের তুমি ভয় পাও তোমাকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে না| 18 আমি তোমাকে রক্ষা করব| তরবারির আঘাতে তোমার মৃত্যু হবে না| কিন্তু তুমি পালিয়ে যাবে এবং বাঁচবে| তুমি আমার ওপর তোমার বিশ্বাস রেখেছিলে বলেই তুমি বেঁচে যাবে|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা|
1 এটি হল প্রভুর একটি বার্তা য়েটি যিরমিয়র কাছে এসেছিল যখন প্রধাণ দেহরক্ষী নবুষরদন তাকে রামা শহর থেকে বিতাড়িত করেছিল| এটা ঘটেছিল যখন নবূষরদন যিরমিয়কে শেকলে বাঁধা অবস্থায় জেরুশালেম এবং যিহূদা থেকে আসা অন্যান্য বন্দীদের সঙ্গে পেয়েছিল যাদের পরে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| 2 নবূষরদন যিরমিয়কে খুঁজে পাওয়ার পর বলেছিল, “যিরমিয়, প্রভু, তোমার ঈশ্বর ঘোষণা করেছিলেন য়ে এই বিপর্য়য এই স্থানের ওপর আসবে| 3 এবং এখন তিনি য়ে ভাবে য়েটা হবে বলেছিলেন সেই ভাবে প্রতিটি জিনিষ করলেন| যিহূদার লোকরা ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বহু পাপ কাজ সংগঠিত করেছিল বলেই এই বিপর্য়য ঘটেছিল| তারা প্রভুকে অমান্য করেছিল| 4 যিরমিয় এখন তোমাকে আমি মুক্ত করে দিচ্ছি| আমি তোমার হাতকড়া খুলে দিচ্ছি| তুমি যদি আমার সঙ্গে বাবিলে আসতে চাও আসতে পারো| আমি তোমার সব রকম খেযাল রাখব| আর যদি না য়েতে চাও এসো না| এটা কোন ব্যাপার নয়| তোমার জন্য সব রাস্তা খোলা| যেখানে খুশি তুমি য়েতে পারো| 5 অথবা তুমি গিয়ে শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিয়র সঙ্গে থাকতে পারো| বাবিলের রাজা গদলিয়কে যিহূদার রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করেছেন| সুতরাং যিহূদার লোকদের কাছেও ফিরে য়েতে পার, গদলিয়র সঙ্গেও থাকতে পারো অথবা যেখানে খুশী তুমি যাও|”এরপর নবূষরদন যিরমিয়কে কিছু খাবার এবং একটি উপহার দিয়ে মুক্ত করে দিয়েছিল| 6 সুতরাং যিরমিয় মিস্পাতে গিয়েছিল অহীকামের পুত্র গদলিয়র কাছে| যিহূদায় পড়ে থাকা লোকগুলো সহ যিরমিয় গদলিয়র সঙ্গে বাস করেছিল| 7 জেরুশালেম যখন ধ্বংস হয়েছিল তখন যিহূদার কিছু সেনা আধিকারিক এবং তাদের সৈন্যরা খোলা দেশটিতে রয়ে গিয়েছিল| তারা শুনলো য়ে বাবিলের রাজা অহীকামের পুত্র গদলিয়কে, যারা খুব গরীব ছিল এবং যাদের বন্দী হিসেবে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়নি সেই সব পুরুষ, স্ত্রীলোক এবং শিশুদের রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করেছেন| যিহূদার গরীব লোকদের বাবিলের সৈন্যরা বন্দী করে নিয়ে না গিয়ে নবূষরদনের নির্দেশে সেখানেই জমি-জমা দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ দিয়েছিল| 8 সুতরাং যিহূদার সৈন্যরা মিস্পাতে এসে গদলিয়র সঙ্গে দেখা করতে সুযোগ দিয়েছিল| সৈন্যদের মধ্যে ছিল: নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল, কারেহের দুই পুত্র য়োহানন ও য়োনাথন, তন্হূমতের পুত্র সরায় নটোফা থেকে এফ-এর পুত্ররা এবং মাখাথীযের পুত্র যাসনিয় এবং তাদের লোকরা| 9 গদলিয় ঐ সৈন্যদের নিরাপত্তা দেবার জন্য একটি শপথ নিয়ে বলেছিল: “সৈন্যগণ তোমাদের কোন ভয় নেই| তোমরা এখানে থেকে যাও, বসতি স্থাপন করো এবং বাবিলের রাজার সেবা কর| বাবিলেই তোমরা গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করো| তোমাদের তাতে মঙ্গল হবে| 10 আমি বয়ং মিস্পাতে থাকব| আমি তোমাদের হয়ে কল্দীয অধিবাসীদের কাছে বলব| ওটা তোমরা আমার ওপর ছেড়ে দাও| কিন্তু তোমাদের দ্রাক্ষা থেকে দ্রাক্ষারস তৈরী করতে হবে| গ্রীষ্মকালীন ফলের এবং তৈলবীজের চাষ করবে| চাষের ফসল মজুত করে রাখবে| তোমরা য়ে সমস্ত শহরের দায়িত্ব নিয়েছ সেখানেই থেকো|” 11 যিহূদার য়ে সব মানুষ মোয়াব, অম্মোন, ইদোম এবং অন্যান্য দেশে চলে গিয়েছিল তারা শুনতে পেলো য়ে বাবিলের রাজা যিহূদার কিছু গরীব লোককে বন্দী করে না নিয়ে গিয়ে যিহূদাতেই বাস করতে দিয়েছে এবং তারা জানতে পারল য়ে সে গদলিয়কে সেই লোকদের রাজ্যপাল নির্বাচিত করেছে| 12 যিহূদার লোকরা যখন এই খবর পেলো তখন তারা এই সমস্ত দেশগুলি থেকে যিহূদায় ফিরে এসেছিল| তারা ফিরে এসেছিল গদলিয়র কাছে মিস্পাতে, বসতি স্থাপন করেছিল, প্রচুর পরিমাণে দ্রাক্ষারস তৈরী করেছিল এবং গ্রীষ্মকালীন ফলের ফসল সংগ্রহ করেছিল| 13 কারেহের পুত্র য়োহানন এবং যিহূদার সৈন্যদের আধিকারিকরা মিস্পাতে গদলিয়র কাছে আবার এসেছিল| 14 তারা গদলিয়কে বলেছিল, “আপনি কি জানেন য়ে, অম্মোনের লোকদের রাজা বালীস নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েলকে পাঠিয়েছে আপনাকে হত্যা করার জন্য?” কিন্তু অহীকামের পুত্র গদলিয় তাদের কথা বিশ্বাস করেনি| 15 তখন য়োহানন ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেছিল গদলিয়র সঙ্গে মিস্পাতে| য়োহানন বলেছিল, আমরা আপনাকে হত্যা করতে দেব না| “আপনি যদি আমায় অনুমতি দেন, আমি ইশ্মায়েলকে হত্যা করব এবং ফিরে আসব| কেউ এ সম্বন্ধে জানতে পারবে না| ইশ্মায়েল এর হাতে আপনাকে হত্যা হতে দেওয়া আমাদের উচিত্ নয়| আমরা আপনাকে হারাতে চাই না কারণ আপনি যদি নিহত হন তাহলে যিহূদার লোক আবার বিভিন্ন দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়বে| এবং ফলস্বরূপ, যিহূদার পড়ে থাকা লোকগুলো প্রাণ হারাবে|” 16 কিন্তু গদলিয় য়োহাননকে বলেছিল, “না ইশ্মায়েলকে হত্যা করো না| তোমরা ইশ্মায়েল সম্বন্ধে যা বলছো তা সত্যি নয়|”
1 সাত মাসের মাথায় নথনিয়ের পুত্র, ইলীশামার পৌত্র ইশ্মায়েল এসেছিল গদলিয়র কাছে| ইশ্মায়েল সঙ্গে নিয়ে এসেছিল আরো দশ জনকে| ঐ দশ জন লোক, ইশ্মায়েলের সঙ্গীরা এসে ছিল মিস্পা শহরে| ইশ্মায়েল ছিল রাজপরিবারের এক জন সদস্য| সে ছিল যিহূদার রাজার রাজসভার এক জন সভাসদ| ইশ্মায়েল ও তার সঙ্গীরা গদলিয়র সঙ্গে এক সঙ্গে খাওয়া-দাওযা করেছিল| 2 যখন তারা এক সঙ্গে খাওয়া-দাওযা করছিল, তখন ইশ্মায়েল ও তার দশ জন সঙ্গী তাদের তরবারি বের করেছিল এবং গদলিযের ওপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করেছিল| গদলিয় ছিল সেই জন য়ে বাবিলের রাজার দ্বারা যিহূদার রাজ্যপাল নিযুক্ত হয়েছিল| 3 ইশ্মায়েল হত্যা করেছিল গদলিযের সঙ্গে মিস্পায বাস করা যিহূদার লোকদের এবং বাবিলের সৈন্যদেরও| 4 গদলিয় নিহত হবার পরের দিন 80 জন মানুষ মিস্পা শহরে এসেছিল| তারা প্রভুর উপাসনালযে এসেছিল শস্য নৈবেদ্য ও হোমবলি নিয়ে| ঐ 80 জন মানুষ তাদের দাড়ি কামিয়ে ফেলেছিল, তাদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ছিল এবং তাদের নিজেদের ক্ষতবিক্ষত করেছিল| ঐ লোকরা এসেছিল শিখিম, শীলো এবং শমরিয়া থেকে| তাদের মধ্যে কেউই জানতো না য়ে গদলিয় নিহত হয়েছে| 5 6 ইশ্মায়েল মিস্পা ছেড়েছিল এবং ঐ লোকদের সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়েছিল| হাঁটবার সময় সে কাঁদছিল|ঐ লোকদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর সে চিত্কার করে বলেছিল, “আমার সঙ্গে চলো তোমরা গদলিয়র সঙ্গে দেখা করতে|” 7 তারা যখন গদলিয়র সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে শহরে এসেছিল, ইশ্মায়েল ও তার সঙ্গীরা ঐ 80 জনকে হত্যা করে একটি গভীর জলাধারে ফেলে দিয়েছিল| কিন্তু হত্যার আগে ইশ্মায়েলকে ঐ 80 জনের 10 জন বলেছিল, “আমাদের অন্তত তুমি হত্যা কোরো না| আমরা মাঠের মধ্যে কিছু জিনিস লুকিয়ে রেখেছি| আমাদের গম আছে, য়ব আছে, তেল ও মধু আছে| এই সব তোমাকে আমরা দেব|” তাই ইশ্মায়েল অন্যদের হত্যা করার সময় ঐ 10 জনকে হত্যা করেনি| 8 9 ইশ্মায়েল গভীর জলাধারটি মৃতদেহে ভরিয়ে ফেলেছিল| জলাধারটি ছিল বিশাল| জলাধারটি নির্মিত হয়েছিল যিহূদার রাজা আসার দ্বারা| আসা জলাধারটি তৈরী করেছিল যাতে যুদ্ধের সময় জলের অভাব না হয়| ইস্রায়েলের রাজা বাশার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আসা ঐ জলাধারটি তৈরী করেছিল| 10 ইশ্মায়েল মিস্পা শহরের লোকদের জোর করে তার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল নদী পার করে অম্মোন সম্প্রদাযের লোকদের দেশে পৌঁছবার জন্য| (ঐ লোকদের মধ্যে ছিল রাজকন্যাগণ, এবং সাধারণ মানুষ যাদের নবূখদ্রিত্সর বন্দী করে নি| নবূষরদন, রাজার বিশেষ রক্ষীদের আধিকারিক, গদলিয়কে এই লোকদের রাজ্যপাল করেছিল|) 11 কারেহের পুত্র য়োহানন এবং তার সঙ্গের সেনা আধিকারিকরা ইশ্মায়েলের দুষ্ট কর্মসমূহের কথা শুনেছিল| 12 তারা যুদ্ধের জন্য সৈন্যবাহিনী নিয়ে রওনা দিয়েছিল| তারা ইশ্মায়েলকে ধরেছিল গিবিযোনে একটি বিশাল জলাশযের কাছে| 13 ইশ্মায়েলের বন্দীরা য়োহানন এবং তার সঙ্গে সেনা আধিকারিকদের দেখে খুব খুশী হয়েছিল| 14 তারপর মিস্পাতে ইশ্মায়েল কর্ত্তৃক যাদের বন্দী করে নেওয়া হয়েছিল সেই সমস্ত লোকরা কারেহের পুত্র য়োহাননের কাছে ছুটে এলো| 15 কিন্তু ইশ্মায়েল কোন মতে তার 8 জন সঙ্গী নিয়ে দৌড়ে লুকিয়ে পড়েছিল অম্মোন দেশের মানুষদের মধ্যে| 16 অতএব গদলিয়কে হত্যা করবার পর ইশ্মায়েল যাদের মিস্পা থেকে বন্দী করেছিল তাদের সবাইকে য়োহানন ও তার সেনা আধিকারিকরা উদ্ধার করেছিল| যারা পড়ে ছিল তারা হল সৈন্যগণ, মহিলাগণ, ছোট ছোট বাচচারা এবং রাজ সভার উচ্চপদস্থ কর্মচারীগণ| গিবিয়োন শহর থেকে এই সব লোকদের য়োহানন ফেরত্ এনেছিল| 17 য়োহানন এবং তার সেনা প্রধানরা কল্দীযদের ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছিল| গদলিয় যিহূদার রাজ্যপাল হিসেবে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর দ্বারা নিযুক্ত হয়েছিল, কিন্তু পরে ইশ্মায়েল তাকে হত্যা করে| তাই য়োহানন ভেবেছিল য়ে এই খবর পেয়ে কল্দীযরা রেগে যাবে| কারণ ইশ্মায়েল তাদের পরিচিত| তাই তারা দ্রুত মিশর ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল| মিশর যাওয়ার পথে বৈত্লেহেম শহরের কাছে গেরুথ কিমহমের য়ে সরাইখানা আছে সেখানে তারা থেকে গিয়েছিল| 18
1 তারা যখন গেরুথ কিমহমে বাস করছিল, তখন য়োহানন এবং হোশযিযের পুত্র যাসনিয় সমস্ত সেনা আধিকারিক এবং ক্ষুদ্রতম থেকে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সব লোকদের নিয়ে ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে গিয়েছিল| তাদের সঙ্গে ছিল সমস্ত সেনা আধিকারিক, গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ লোকরাও| 2 তারা প্রত্যেকে গিয়ে যিরমিয়কে বলেছিল, “যিরমিয়, অনুগ্রহ করে আমাদের কথা শোন| প্রভু, তোমার ঈশ্বরের কাছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া যিহূদার কোন মতে জীবিত এই সামান্য কয়েক জন লোকদের জন্য প্রার্থনা করো| যিরমিয় তুমি দেখতেই পাচ্ছো য়ে একটা সময় আমরা সংখ্যায় অনেক থাকলেও এখন আমরা সামান্য কয়েক জনে এসে ঠেকেছি| 3 যিরমিয় প্রভু তোমার ঈশ্বরকে প্রার্থনা করে বলে দিতে বলো আমরা এখন কি করব, কোথায় যাব?” 4 তখন ভাব্বাদী যিরমিয় উত্তর দিয়েছিল, “আমি বুঝতে পারছি তোমরা আমাকে কি করতে বলছো| আমি তোমাদের ইচ্ছামতো তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে প্রার্থনা করে সব বলব| এবং প্রভুর উত্তরও গোপন না করে তোমাদের জানাব|” 5 তখন তারা যিরমিয়কে বলেছিল, “প্রভু তোমার ঈশ্বর আমাদের যা করতে বলবেন তা যদি আমরা না করি তাহলে আমরা আশা করি প্রভু হবেন আমাদের বিরুদ্ধে এক জন সত্যবাদী বিশ্বস্ত সাক্ষী| আমরা জানি প্রভু, তোমার ঈশ্বর তোমাকে পাঠিয়ে আমাদের কি কি করতে বলবেন| 6 আমরা বাণী পছন্দ করি কি না করি সেটা কোন ব্যাপারই নয়| আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে মান্য করব| আমরা তোমাকে প্রভুর কাছে পাঠাচ্ছি তাঁর একটি বাণীর জন্য| তিনি যা বলবেন তা আমরা মেনে চলব তখন আমাদের মঙ্গল হবে| হ্যাঁ, আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে মান্য করব|” 7 দশ দিন পর প্রভুর বার্তা এসেছিল যিরমিয়র কাছে| 8 তখন য়োহানন ও তার সেনা আধিকারিকদের এবং অন্যান্য সমস্ত লোককে ডেকে যিরমিয় বলেছিল, 9 তোমরা আমাকে প্রভুকে জিজ্ঞাসা করতে পাঠিয়েছিলে, “প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল এই: 10 ‘তোমরা যদি যিহূদা দেশে বাস করো, আমি তোমাদের শক্তিশালী করে তুলব- আমি তোমাদের ধ্বংস করব না| আমি তোমাদের চারাগাছের মতো বপন করব এবং তোমাদের আগাছার মতো উপড়ে ফেলব না| আমি এটা করব কারণ আমি দুঃখীত য়ে আমি তোমাদের জীবনে মারাত্মক বিপর্য়যগুলি এনেছিলাম| 11 বাবিলের রাজাকে এখন আর তোমরা ভয় পেও না| কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে আছি| আমি তোমাদের রক্ষা করব| তার হাত থেকে আমি তোমাদের উদ্ধার করব| 12 আমি তোমাদের প্রতি করুণা করব এবং বাবিলের রাজাও তোমাদের প্রতি কৃপা প্রদর্শন করবে| এবং সে তোমাদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনবে|’ 13 কিন্তু তোমরা হয়তো বলবে, ‘আমরা যিহূদায় থাকব না|’ যদি তোমরা একথা বলো তাহলে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে অমান্য করবে| 14 তোমরা হয়তো বলবে, ‘না, আমরা মিশরে গিয়ে বসবাস করব| সেখানে যুদ্ধের শিঙা বেজে উঠবে না| যুদ্ধের প্রকোপে আমাদের সেখানে অনাহারে যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে না|’ 15 যদি তোমরা এই কথা বলো তাহলে প্রলয়ের রক্ষা পাওয়া যিহূদার লোকরা, শোন, প্রভুর বার্তা শোন| প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘তোমরা যদি মিশরে গিয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকো তাহলে এই ঘটনাগুলি ঘটবে: 16 তোমরা তরবারিকে ভয় পাও| কিন্তু মিশরে তোমরা তরবারি দ্বারা পরাজিত হবে| তোমরা ক্ষুধার চিন্তা কর, কিন্তু মিশরেও তোমরা অনাহারে থাকবে| তোমরা সেখানে মারা যাবে| 17 য়ে সমস্ত লোক মিশরে য়েতে এবং সেখানে বাস করতে স্থির করেছিল তাদের মধ্যে এক জনও বেঁচে থাকবে না| তরবারির আঘাত, অনাহার এবং মহামারীর প্রকোপে প্রত্যেকে মারা যাবে| আমার তাণ্ডব থেকে কেউ পালিয়ে বাঁচতে পারবে না|’ 18 “প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘আমি জেরুশালেমের বিরুদ্ধে আমার রোধ দেখিয়েছিলাম| জেরুশালেমবাসীদের আমি শাস্তিও দিয়েছি| একই ভাবে মিশরে য়েতে ইচ্ছুক প্রত্যেক ব্যক্তির বিরুদ্ধেও আমি আমার রোধ দর্শন করাবো| লোক খারাপ ঘটনার উদাহরণ হিসেবে তোমাদের কথা উল্লেখ করবে| তোমরা হবে অভিশপ্ত| লোকরা তোমাদের জন্য লজ্জিত হবে| তোমাদের অপমান করবে| এবং তোমরা আর কোন দিন যিহূদাকে স্বচক্ষে দেখতে পাবে না|’ 19 যিহূদার বেঁচে যাওয়া লোকরা, প্রভু তোমাদের বলেছিলেন: ‘মিশরে য়েও না|’ এখন আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, 20 তোমরা একটা ভুল করছো য়েটা তোমাদের মৃত্যু আনবে| তোমরা আমাকে পাঠিয়েছিলে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের কাছে| তোমরা আমাকে বলেছিলে, ‘প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করো| প্রভু আমাদের কি করতে বলেছেন তা সব আমাদের জানাও| আমরা প্রভুকে মান্য করব|’ 21 তাই আজ আমি তোমাদের প্রভুর বার্তাগুলি বলেছি| কিন্তু তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে অমান্য করেছো| আমি তাঁর কাছ থেকে য়ে বাণীগুলি নিয়ে এসেছি তা তোমরা শুনে চলছো না| 22 সুতরাং এখন নিশ্চিতভাবে তোমরা একথা বুঝে নাও: তোমরা যারা মিশরে য়েতে চাও তাদের জীবনে দুর্য়োগ আসবেই| তোমাদের মৃত্যু হবে তরবারির আঘাতে, অনাহারে অথবা ভয়ঙ্কর মহামারীর প্রকোপে|”
1 সুতরাং যিরমিয়, প্রভু তাদের ঈশ্বরের সব বার্তা তাদের বলে শেষ করেছিল| যিরমিয় সবসুছু তাদের বলেছিল যা যা প্রভু তাকে ঐ লোকদের বলতে পাঠিয়েছিলেন| 2 হোশযিযের পুত্র অসরিয় ও কারেহের পুত্র য়োহানন এবং আরও কিছু মানুষ ভীষণ অহঙ্কারী এবং একগুঁযে ও জেদী| তারা যিরমিয়র প্রতি রুদ্ধ হয়ে উঠেছিল| রুদ্ধ জনতা যিরমিয়কে বলেছিল, “তুমি মিথ্য়ে বলছো যিরমিয়| প্রভু, আমাদের ঈশ্বর তোমাকে আমাদের কাছে একথা বলতে পাঠাননি য়ে, আমরা য়েন মিশরে না যাই| 3 যিরমিয়, আমাদের মনে হচ্ছে নেরিযের পুত্র বারূক তোমাকে উত্সাহ য়োগাচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য| বারূক চায় আমাদের বাবিলের লোকদের হাতে তুলে দিতে| সে চায় আমাদের ওরা হত্যা করুক| কিংবা আমাদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে যাক|” 4 তারপর য়োহানন, সেনা প্রধানরা এবং সমস্ত লোক প্রভুর আদেশ মান্য করল না এবং 5 যিহূদার লোকদের নিয়ে মিশরে চলে গিয়েছিল| অতীতেও শএুবাহিনী ঐ লোকদের যিহূদা থেকে অন্যান্য দেশে নিয়ে চলে গেলেও তারা আবার যিহূদাতেই ফিরে এসেছিল| 6 এবার য়োহানন ও তার সেনা প্রধান সমস্ত পুরুষ, মহিলা, শিশু এবং রাজকন্যাদের মিশরে নিয়ে গেল| (বাবিলের রাজার বিশেষ রক্ষীদের প্রধান, নবূষরদন, গদলিয়কে ঐ লোকদের তত্ত্বাবধানে রেখেছিলেন|) সে ভাব্বাদী যিরমিয় এবং নেরিযের পুত্র বারূককেও মিশরে নিয়ে গিয়েছিল| 7 প্রভুর বারণ না শুনে তারা গিয়ে উঠল মিশরের উত্তর পূর্বাঞ্চলের তফন্হেষ শহরে| 8 তফন্হেষ শহরে যিরমিয় প্রভুর বার্তা পেয়েছিল| এই হল প্রভুর বার্তা: 9 “যিরমিয়, যাও কিছু বড় আকারের পাথর জোগাড় করে আনো| তফন্হেষ শহরে ফরৌণের প্রাসাদের সামনে মাটি ও ইঁটের তৈরী ফুটপাতে ঐ পাথরগুলি পুঁতে ফেল| যিহূদার লোকদের চোখের সামনেই তুমি ঐ পাথরগুলি মাটিতে পুঁতবে| 10 সেই সময় তুমি ঐ লোকদের উদ্দেশ্যে বলবে: ‘প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: আমি আমার ভৃত্য বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে এখানে আনব এবং তার সিংহাসনে য়ে পাথরগুলি আমি পুঁতেছি তার ওপর রাখব| নবূখদ্রিত্সর এখানেই তার মাথার ওপর চাঁদোযা খাটিযে সিংহাসনে বসবে| 11 সে আসবে এবং মিশর আক্রমণ করবে| কাউকে মেরে ফেলা হবে, কাউকে বন্দি করা হবে এবং অপর কাউকে যুদ্ধে নিহত করা হবে| 12 মিশরের মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলো সে নিয়ে চলে যাবে| তারপর সে ভ্রান্ত দেবতাদের সমস্ত মন্দিরগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেবে| এক জন মেষপালক য়েমন তার পোশাক থেকে ছারপোকা বেছে তার পোশাকাদি পরিষ্কার করে তেমন করেই নবূখদ্রিত্সর মিশরকে পরিষ্কার করবে| তারপর সে নিরাপদে মিশর ত্যাগ করবে| 13 সূর্য় দেবতার মন্দিরে সমস্ত স্মরণস্তম্ভগুলি নবূখদ্রিত্সর ভেঙে দেবে| এবং সে মিশরের মূর্ত্তিসমূহের সমস্ত মন্দিরে আগুন লাগিয়ে দেবে| তারপর সে নিরাপদে মিশর ছেড়ে চলে যাবে|”‘
1 মিশরে বসবাসকারী যিহূদার লোকদের জন্য প্রভুর বার্তা এসেছিল যিরমিয়র কাছে| যিহূদার লোকরা তখন মিশরের মিগ্দোলে, তফন্হেষে, নোফে এবং দক্ষিণ মিশরের শহরগুলিতে বসবাস করছিল| প্রভুর বার্তা ছিল: 2 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, “তোমরা ইতিমধ্যে দেখতে পেয়েছো জেরুশালেম ও যিহূদার শহরগুলিকে আমি কি ভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছি| 3 ঐ শহরগুলির লোকরা অসত্ কার্য়কলাপসমূহের মধ্যে লিপ্ত ছিল, সেই কারণেই আমি ঐ শহরগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছি| ঐ শহরগুলির লোকরা অন্য দেবতাদের নৈবেদ্য দিয়ে আমাকে রুদ্ধ করে তুলেছিল| যাদের তাদের পূর্বপুরুষরাও পূজো করেনি এবং তাতেই আমার রাগ হয়ে গিয়েছিল| 4 আমি তাদের কাছে বার বার আমার ভাব্বাদীদের পাঠিয়েছিলাম, ভাব্বাদীরা আমারই অনুচর| ঐ ভাব্বাদীরা আমার বার্তা ঐ লোকদের কাছে বলেছিল| ভাব্বাদীরা বলেছিল, ‘এই ভয়ঙ্কর কাজ করো না| অন্য মূর্ত্তিদের পূজাকে আমি ঘৃণা করি|’ 5 কিন্তু ঐ লোকরা ভাব্বাদীদের কথা মন দিয়ে শোনে নি| তারা অসত্ পথ থেকে সরে আসেনি| মূর্ত্তিদের নৈবেদ্য সাজিযে পূজো করা বন্ধ করেনি| 6 তাই আমি আমার রোধ দেখিয়েছিলাম| শাস্তি দিয়েছিলাম যিহূদার শহরগুলিকে এবং জেরুশালেমের রাস্তাগুলিকে| আমার রোধ বর্ষণের ফলেই আজ যিহূদা ও জেরুশালেম শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে|” 7 তাই প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, “কেন তোমরা মূর্ত্তিদের পূজা করে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছো? তোমাদের জন্যই যিহূদার পরিবার ছিন্নমূল, তোমাদের জন্যই স্ত্রী, পুরুষ এবং শিশুদের যিহূদা থেকে আলাদা করা হয়েছে| এবং সেই জন্য যিহূদার পরিবার থেকে জীবিত কেউ বাকী থাকবে না| 8 কেন তোমরা মূর্ত্তি তৈরী করে আমাকে রুদ্ধ করে তোল? এখন আবার তোমরা মিশরের মূর্ত্তিকে নৈবেদ্য সাজিযে পূজো করে আমায় রুদ্ধ করে তুলেছো| তোমরা তোমাদের নিজেদের দোষেই ধ্বংস হবে| অন্যান্য দেশগুলির লোকদের কাছে তোমরা হবে অভিশাপ এবং উপহাসের পাত্র| 9 তোমরা কি তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা অসত্ কর্মগুলি করেছিল তা ভুলে গিয়েছো? ভুলে গিয়েছো যিহূদার রাজা ও রানীরা কত পাপ কাজ করেছিল? যিহূদা দেশে ও জেরুশালেমের রাস্তাগুলোয তোমাদের স্ত্রীরা ও তোমরা য়ে পাপগুলো করেছিলে সেগুলোর কথা কি ভুলে গিয়েছো? 10 এমন কি আজ পর্য়ন্ত যিহূদার লোকরা নিজেদের নম্র বিনীত করে তুলল না| তারা আমাকে কোন রকম সম্মান জানায নি| এবং তারা আমার শিক্ষামালাকে অনুসরণ করেনি| মান্য করেনি বিধিকে যা আমি প্রণযন করেছিলাম তাদের ও তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য|” 11 সুতরাং প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: “আমি তোমাদের জীবনে ভয়ঙ্কর কিছু ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি| আমি সমগ্র যিহূদা পরিবারকে ধ্বংস করে দেব| 12 সামান্য কিছু যিহূদার জীবিত মানুষ (যিহূদা ধ্বংসের পর যারা বেঁচে গিয়েছিল) রয়ে গিয়েছিল তারাই মিশরে চলে এসেছে| তাদেরও আমি ধ্বংস করে দেব| তাদের মৃত্যু হবে তরবারির আঘাতে অথবা অনাহারে| যিহূদার অবশিষ্ট এই লোকদের জীবনে এমন দুর্য়োগ আসবে যা দেখে অন্য দেশের লোকরাও ভয়ে শিউরে উঠবে| অভিশপ্ত হয়ে উঠবে মিশরে চলে আসা যিহূদার মানুষগুলোর জীবন| অন্য দেশের মানুষ তাদের নিয়ে হাসাহাসি করবে, অপমান করবে| 13 মিশরে যারা চলে এসেছে তাদের আমি চরম শাস্তি দেব| তাদের শাস্তি দেবার জন্য আমি তরবারি, অনাহার এবং মারাত্মক রোগসমূহের ব্যবহার প্রযোগ করব, ঠিক য়েমন আমি জেরুশালেমকে শাস্তি দিয়েছিলাম| 14 মিশরে চলে আসা যিহূদার জীবিত মানুষরা কেউ আমার শাস্তি থেকে পালিয়ে বাঁচতে পারবে না| যিহূদায় কেউ বেঁচে ফিরে য়েতে পারবে না| যিহূদায় ফিরে য়েতে চাইলেও তারা ফিরতে পারবে না তবে হয়তো কয়েক জন পালিয়ে য়েতেও পারে|” 15 মিশরে বাস করা যিহূদার অধিকাংশ মহিলা নৈবেদ্য সাজিযে মূর্ত্তি পূজা করতো| অথবা তাদের স্বামীরাও জানতো কিন্তু বারণ করতো না| যিহূদার বহু লোকে, যারা দক্ষিণ মিশরে বাস করত একত্রিত হয়েছিল| তারা তাদের স্ত্রীদের অন্য দেবতাদের নৈবেদ্য সাজিযে পূজো দেওয়ার বিষযটি নিয়ে যিরমিয়কে বলেছিল, 16 “তুমি য়ে প্রভুর বার্তা আমাদের বলেছিলে তা আমরা শুনব না| 17 আমরা স্বর্গের রানীকেই আমাদের নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ| এবং আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি মতোই কাজ করব| আমরা আমাদের পেয নৈবেদ্য তাকেই উত্সর্গ করব উপাসনার মধ্যে দিয়ে| আমরা আমাদের পূর্বপুরুষ, আমাদের রাজারা ও তার সভাসদেরা অতীতে তাই করে এসেছে| আমরা যিহূদার শহরগুলিতে এবং জেরুশালেমের রাস্তাগুলিতে একই জিনিষ করেছি| আমরা যখনই স্বর্গের রানীকে পূজা করেছি তখনই আমরা প্রচুর খাদ্য পেয়েছি| আমরা সাফল্য পেয়েছি| এবং আমাদের জীবনে কোন খারাপ ঘটেনি| 18 কিন্তু আমরা যখন তার পূজা বন্ধ করেছি তখনই আমাদের জীবনে সমস্যা ঘনীভূত হয়ে উঠেছে| আমাদের মানুষ মারা গিয়েছে তরবারির আঘাতে ও অনাহারে|” 19 এখন এই স্বামীদের স্ত্রীরাও যিরমিয়কে বলে উঠল, “আমাদের স্বামীরা জানতো য়ে আমরা কি করছি| তাদের সম্মতিএমেই আমরা স্বর্গের রানীকে উত্সর্গ ও পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছিলাম| তারা এও জানতো য়ে আমরা তার মুখের আদলে কেক বানাতাম|” 20 তখন যিরমিয় সেই পুরুষ এবং মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছিল| 21 যিরমিয় তাদের বলেছিল, “প্রভু সব কিছু মনে রাখেন, যিহূদা ও জেরুশালেমের রাস্তায় তোমরা অন্য দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলি দিয়েছিলে| তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ তোমাদের রাজা ও তার সভাসদেরা এবং ঐ দেশের সমস্ত মানুষ কি কি করেছিল সব প্রভু মনে রেখেছিলেন| 22 তোমাদের পাপ কাজগুলি প্রভু আর সহ্য করতে পারছিলেন না| তোমাদের মারাত্মক কাজগুলির জন্য তিনি তোমাদের দেশকে একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত করেছিলেন| কোন ব্যক্তি আর সেখানে এখন বাস করে না| অন্য দেশের লোকরা ঐ দেশের নিন্দা করে| 23 তোমরা অন্য দেবতাদের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করেছিলে বলে, প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কর্ম করেছিলে বলে, প্রভুকে মান্য করনি বলে, প্রভুর শিক্ষামালা অনুসরণ করনি বলে এবং তাঁর চুক্তিতে তোমরা তোমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করনি বলে তোমাদের জীবনে ঐ বিপর্য়য ঘটেছিল|” 24 তখন যিরমিয় ঐ পুরুষ ও মহিলাদের বলেছিল: “যিহূদার লোকরা যারা আজ মিশরে এসে থাকছো তারা মন দিয়ে প্রভুর বার্তা শোন: 25 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘হে নারী তোমরা বলেছিলে, “আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করব না| আমরা স্বর্গের রানীকে পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ|” সুতরাং যাও তোমরা তোমাদের প্রতিশ্রুতি মতো কাজ করো| 26 মিশরে বাস করা যিহূদার লোকরা প্রভুর বার্তা শোন: আমি আমার মহান নামের শপথ নিচ্ছি: মিশরে বাস করা যিহূদার কোন মানুষ আর কখনো আমার নামে প্রতিশ্রুতি করতে পারবে না| তারা আর কখনো বলে উঠবে না, “জীবন্ত প্রভুর দিব্য|” 27 “‘যিহূদার সেই লোকগুলিকে আমি লক্ষ্য করছি| তাদের ভালো করবার জন্য আমি এটা করছি না, করছি তাদের আঘাত করবার জন্য| মিশরে বসবাস করা যিহূদার লোকদের অনাহারে ও তরবারির আঘাতে মৃত্যু হবে| 28 কিছু লোক পালিয়ে যাবে| তরবারির আঘাতে মারা যাবে না| তারা প্রাণ নিয়ে মিশর থেকে যিহূদায় ফিরে আসবে| কিন্তু তাদের সংখ্যা খুবই সামান্য| তখন তারা বুঝতে পারবে কার কথা সত্যি হল, আমার না তাদের কথা| 29 প্রভু বলেন: ‘আমি য়ে তোমাদের এখানে, এই মিশরে, শাস্তি দেব তার একটা প্রমাণ দেব| তখন তোমরা জানবে য়ে তোমাদের আঘাত করবার য়ে শপথ আমি নিয়েছিলাম তা পরিপূর্ণ হয়েছে| 30 এটাই তোমাদের কাছে প্রমাণ করবে য়ে আমি যা কিছু বলি তা সত্য হবে| মিশরের রাজা ফরৌণ হফ্রাকে তার শএুরা হত্যা করতে চায়| আমি ফরৌণ হফ্রাকে তার শএুদের হাতে তুলে দেব| য়েমন করে আমি যিহূদার রাজা সিদিকিয়কে তার শএুপক্ষ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের হাতে তুলে দিয়েছিলাম, ঠিক একই রকম ভাবে ফরৌণ হফ্রাকেও আমি তার শএুদের হাতে তুলে দেব|”‘
1 য়োশিযের পুত্র যিহোয়াকীম তখন যিহূদার রাজা| যিহোয়াকীমের রাজত্বকালের চার বছরের মাথায় ভাব্বাদী যিরমিয় নেরিযের পুত্র বারূককে এই বার্তাগুলি বলেছিল| বারূক একটি খাতায় সেগুলি লিখেছিল| যিরমিয় বারূককে বলেছিল, 2 “এই হল প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমাদের সম্বন্ধে বলেছেন| 3 ‘বারূক তুমি বলেছিলে: সেটা আমার জন্য খুব খারাপ| প্রভু আমার যন্ত্রণায় দুঃখ য়োগ করছেন| আমি আমার যন্ত্রণার দরুন ক্লান্ত এবং বিশ্রাম পাচ্ছি না|”‘ 4 প্রভু বলেছিলেন, “যিরমিয়, বারূককে একথা জানিয়ে দাও: ‘প্রভু যা বললেন তা হল, আমি যা বপন করেছি তা আমিই আবার উপড়ে ফেলব| আমি যা সৃষ্টি করেছি আমিই আবার তা নষ্ট করে ফেলব| যিহূদার সর্বত্র এই ঘটনা ঘটাবো| 5 বারূক, তুমি তোমার নিজের জন্য বিরাট একটা কিছুর খোঁজ করছ| কিন্তু এমন বিরাট জিনিষ খুঁজো না| কারণ আমি সমস্ত লোকের ওপর মারাত্মক ঘটনা ঘটাবো|’ কিন্তু তোমাকে আমি জীবিত ছেড়ে দেব, তুমি যেখানে খুশী পালিয়ে য়েতে পারো|”‘ প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন|
1 অন্যান্য জাতিগুলি সম্বন্ধে ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে এই বার্তাগুলি এসেছিল| 2 এই বার্তা হল মিশর ও মিশরের রাজা ফরৌণ-নখোর সৈন্যবাহিনীর জন্যে| নখোর সৈন্যরা ফরাত্ নদীর তীরে কর্কমীশ শহরে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের কাছে পরাজিত হয়েছিল| রাজা য়োশিযের পুত্র রাজা যিহোয়াকীম যখন তার রাজত্বের চতুর্থ বছরে ছিল সেই সময় নবূখদ্রিত্সর ফরৌন-নখোর সৈন্যদের পরাজিত করেছিল| এই হল মিশর সম্পর্কিত প্রভুর বার্তা: 3 “তোমরা ছোট এবং বড় ঢাল নিয়ে যুদ্ধের জন্য এগিয়ে যাও| 4 সৈন্যরা, তোমরা তোমাদের অশ্বদের প্রস্তুত করবে এবং তাদের ওপর বসবে| যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতরে দুর্বারভাবে এগিয়ে যাও| তোমাদের শিরস্ত্রাণ পরে নাও; তোমাদের বর্শাকে ঘষা-মাজা করে নাও এবং তোমাদের বর্ম পরে নাও| 5 আমি কি দেখতে পাচ্ছি? সৈন্যরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছুটে পালাচ্ছে| তাদের সাহসী সৈন্যরা পরাজিত| তারা দ্রুত দৌড়চ্ছে, পিছন ফিরে তাকাচ্ছে না| সেখানে চতুর্দিকে বিপদ|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 6 “দ্রুতগামী লোকরা আর দৌড়তে পারছে না| শক্তিশালী সৈন্যরা পালাতে পারছে না| তারা হোঁচট খেযে পড়ে যাচ্ছে| ফরাত্ নদীর তীরে, উত্তরদিকে এই ঘটনা ঘটবে| 7 নীল নদের মতো কে এগিয়ে আসছে? কে এগিয়ে আসছে দ্রুতগামী শক্তিশালী নদীর মতো? 8 মিশর নীল নদের মতো জেগে ওঠো, একটি বেগবান ও শক্তিশালী নদীর মত| শক্তিশালী দ্রুতগামী নদীর মতো য়ে আসছে সে মিশর| মিশর বলল, ‘আমি আসব এবং পৃথিবীকে গ্রাস করব| আমি ধ্বংস করব শহরগুলিকে এবং সেই শহরের মানুষকে|’ 9 অশ্বারোহী সৈন্যরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ো| রথচালকরা, দ্রুত ছোটাও রথের চাকা| বীর য়োদ্ধা এগিয়ে চলো| কূশ এবং পূটিয সৈন্যগণ, তোমাদের বর্মগুলি বহন কর| লূদীয় সৈন্যগণ, তোমাদের ধনুকগুলো ব্যবহার কর| 10 “কিন্তু সে সময় আমাদের প্রভু সর্বশক্তিমান জয়ী হবেন| সেই সময় তিনি তাদের য়োগ্য শাস্তি দেবেন| প্রভুর তরবারি ততক্ষণ হত্যা করে যাবে যতক্ষণ না তাদের রক্তের জন্য তাঁর তৃষ্ণা নিবারন হয়| এটা হবে কারণ আমাদের মালিক, প্রভু সর্বশক্তিমানের জন্য একটি উত্সর্গ আছে| ফরাত্ নদীর ধারে ঐ দেশের উত্তর দিকে মিশরের সৈন্যদল হল সেই উত্সর্গ| তাই এগুলি ঘটবে| 11 “মিশর তুমি তোমার রয়োজনীয় ওষুধের জন্য গিলিয়দে যাবে| তুমি প্রচুর ওষুধ পাবে কিন্তু তাতে তোমার কাজ হবে না| তুমি কখনও সুস্থ হয়ে উঠবে না| তোমার ক্ষত কোনদিন সারবে না| 12 অন্যান্য জাতিগুলি তোমার কান্না শুনতে পাবে| তোমার কান্না শোনা যাবে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে| কারণ একজন ‘বীরয়োদ্ধা’ আরেক জনের ওপর হুমড়ি খেযে পড়বে| কিন্তু তারা দুজনেই এক সঙ্গে মাটিতে আছাড় খাবে|” 13 নবূখদ্রিত্সর আসছে মিশর আক্রমণ করতে| এই ব্যাপারে প্রভুর বার্তা এল ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে| 14 “মিশরে, মিগ্দোল শহরে, নোফে এবং তফন্হেষ শহরেও এই বার্তা ঘোষণা করে দাও| ‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও| কেন? কারণ তোমাদের চারপাশের সমস্ত জাতিসমূহ তরবারি দ্বারা নিহত হচ্ছে|’ 15 “মিশর, তোমার শক্তিশালী সৈন্যরা নিহত হবে| তারা আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না| কারণ তারা উঠে দাঁড়াতে গেলেই প্রভু তাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেবেন| 16 ঐ সৈন্যরা বার বার হোঁচট খেযে একে অন্যের ঘাড়ের ওপর পড়বে| তারা বলবে, ‘চলো ওঠো আমরা ফিরে যাই নিজেদের দেশে, নিজেদের লোকের কাছে| শএুরা আমাদের পরাজিত করেছে সুতরাং আমাদের তো চলে য়েতেই হবে|’ 17 তাদের স্বদেশে ফিরে গিয়ে সৈন্যরা বলবে, ফরৌণ শুধু মুখে বড় বড় কথা বলে| রাজার গৌরবের সময় ফুরিযে গেছে|”‘ 18 এ হল রাজার বাণী| রাজাই হলেন প্রভু সর্বশক্তিমান| “আমি আছি এটা য়েমন নিশ্চিত, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এক ক্ষমতাশালী নেতা আসবে| সে হবে সমুদ্রের সন্নিকটে স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তাবোর এবং কর্মিল পর্বতের মতো বিশাল| 19 মিশরের লোকরা, জিনিসপত্র গুছিযে নিয়ে নির্বাসনে যাবার জন্য প্রস্তুত হও| কারণ নোফে ও অন্যান্য শহরগুলি ধ্বংস হয়ে শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে, কেউ সেখানে বাস করবে না| 20 “মিশর হল একটি রুপসী গাইয়ের মতো, কিন্তু তাকে বিরক্ত করতে উত্তর দিক থেকে ঘোড়া দংশক মাছি আসছে| 21 মিশর সেনাবাহিনীর ভাড়াটে সৈন্যরা হল তরুণী গাভীর মতো| তারা কখনো শক্তিশালী আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না| তারা দৌড়ে পালাবে| তাদেরও শেষ হবার সময় ঘনিয়ে আসছে| শীঘ্রই তারা শাস্তি পাবে| 22 মিশর শুধু সাপের মতো হিসহিস শব্দ করে ফুঁসবে আর পালানোর চেষ্টা করবে| শএুপক্ষ এমশঃ তার কাছে এগিয়ে আসবে| এবং মিশরের সৈন্যরা শুধু আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবে কি করে পালিয়ে যাওয়া যায়| শএুদল কুঠার নিয়ে মিশরকে আক্রমণ করবে| তারা য়েন গাছ কেটে ফেলছে এমন লোকদের মত|” 23 প্রভু এই কথাগুলি বলেন, “অরণ্যের গাছ কাটার মতো তারা মিশরের সৈন্যদের কেটে ফেলবে| মিশরের সৈন্য সংখ্যা অসংখ্য হলেও তারা কেউ ছাড়া পাবে না| শএুপক্ষের সৈন্যরা হল পঙ্গপালের মতো অগুনতি| 24 মিশর লজ্জিত হবে| উত্তরের শএুপক্ষ তাকে পরাজিত করবে|” 25 প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “খুব শীঘ্রই আমি থীবসদের দেবতা, অম্মোনকে শাস্তি দেব| এবং আমি ফরৌণকে, মিশরকে ও তার দেবতাদেরও শাস্তি দেব| ফরৌণের ওপর নির্ভরশীল লোকদেরও আমি শাস্তি দেব| 26 শএুপক্ষের কাছে আমি ঐ লোকদের পরাজিত করব| শএুসেনা তাদের হত্যা করতে চায়| আমি ঐ লোকদের বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর ও তার অনুচরদের হাতে তুলে দেব|”“অতীতে মিশরে শান্তি বিরাজ করতো| এবং এই সমস্ত সমস্যাগুলি কেটে যাবার পর মিশরে আবার শান্তি ফিরে আসবে|” প্রভু এই কথা বললেন| 27 “যাকোব, আমার অনুচর, আমার সেবক, ভীত হযো না| ভয় পেও না ইস্রায়েল| আমি তোমাকে ঐ সব দূর দেশের হাত থেকে রক্ষা করব| তোমার নির্বাসিত সন্তানদের আমি রক্ষা করব| যাকোবে আবার নিরাপত্তা ও শান্তি ফিরে আসবে| কেউ আর তাকে ভয় দেখাতে পারবে না|” 28 প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন, “যাকোব আমার সেবক, ভয় পেও না| আমি তোমার সঙ্গে আছি| আমি তোমাকে ভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি কিন্তু তোমাকে পুরোপুরি ধ্বংস করিনি| অথচ আমি অন্যান্য দেশগুলোকে ধ্বংস করে দেব| খারাপ কাজ করার ফলস্বরূপ তুমি আজ সাজা প্রাপ্ত| আমি তোমাকে শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দিতে পারি না| আমি তোমাকে শাস্তি দেব, কিন্তু আমি সেটি ন্যায়পরায়ণভাবে করব|”
1 পলেষ্টীয়দের সম্বন্ধে ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এসেছিল| ফরৌণ ঘসা শহর আক্রমণের আগে এই বার্তা এসেছিল| 2 প্রভু বলেছেন: “দেখ, শএুপক্ষের সেনারা উত্তরে একত্রিত হচ্ছে| তারা এগিয়ে আসছে কূলছাপানো প্রবল নদীর মতো| ঐ সৈন্যদল সমগ্র দেশটিকে এবং তার সমস্ত শহরগুলোকে এক শক্তিশালী বন্যার মত ঢেকে দেবে| সমস্ত শহরের এবং গোটা দেশের মানুষ সাহায্যের জন্য চিত্কার করে উঠবে| 3 “তারা শুনতে পাবে ছুটন্ত ঘোড়ার ক্ষুরের শব্দ| শুনতে পাবে তীব্র গতিতে ছুটে আসা রথের চাকার শব্দ| পিতারা তাদের সন্তানদের রক্ষা করতে পারবে না| তারা এত দুর্বল হয়ে পড়বে য়ে সাহায্য করার শক্তিও তাদের মধ্যে অবশিষ্ট থাকবে না| 4 “পলেষ্টীয় লোকদের ধ্বংসের সময় আসছে| যারা সোর ও সীদোনের লোকদের সাহায্য করেছিল তাদের ধ্বংসের সময় আসছে| শীঘ্রই প্রভু পলেষ্টীয় লোকদের ধ্বংস করবেন| তিনি ধ্বংস করবেন কপ্তোর দ্বীপের জীবিত অবশিষ্ট লোকদেরও| 5 ঘসার লোকরা তাদের মাথা কামাবে এবং শোক প্রকাশ করবে| অস্কিলোনের লোকরা চুপ করে থাকবে| উপত্যকায় বেঁচে যাওয়া লোকরা, তোমরা আর কত দিন নিজেদের আহত করবে? 6 “প্রভুর তরবারি, তুমি এখনো ফিরে যাওনি| আর কতদিন এই ভাবে যুদ্ধ করে যাবে? যাও এবার তোমার খাপে ফিরে যাও এবং স্থির হও| 7 হে প্রভুর তরবারি, কি করে তুমি প্রভুর আদেশ অগ্রাহ্য করতে পারো এবং তোমার খাপে ফিরে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারো? প্রভুই তাঁর তরবারিকে আদেশ দিয়েছেন অস্কিলোন শহর এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলকে আক্রমণ করার জন্য|”
1 মোয়াব দেশ সম্বন্ধে হল এই বার্তা| প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন: “নবো পর্বতের জন্য খুব খারাপ হবে| নবো পর্বত ধ্বংস হয়ে যাবে| কিরিযাথযিমকে অপদস্থ করা হবে এবং তাকে দখল করা হবে| ঐ শক্তিশালী জায়গাটিকে অবদমিত ও ধ্বংস করা হবে| 2 মোয়াবের আর কখনো প্রশংসা করা হবে না| হিশ্বোনের লোকরা মোয়াবের পরাজয়ের পরিকল্পনা করবে| তারা বলবে, ‘এসো, আমরা ঐ দেশটি শেষ করে দিই|” মদ্মেনা, তুমিও নিশ্চুপ হয়ে যাবে| প্রভুর তরবারি তোমাকেও তাড়া করবে| 3 হোরোণযিম থেকে কান্নার রোল উঠছে শোন| তারা বিশৃঙ্খল অবস্থা ও ধ্বংস দেখে কাঁদছে| 4 মোয়াব ধ্বংস হবে| তার সন্তানরা সাহায্যের জন্য চিত্কার করে কাঁদবে| 5 মোয়াবের লোকরা কাঁদতে কাঁদতে লূহীতের ফুটপাত দিয়ে হাঁটবে| তাদের সেই বেদনাবিধুর কান্নার আওয়াজ শোনা যাবে হোরোণযিম শহরের রাস্তা থেকে| 6 বাঁচার জন্য পালাও| দৌড়োও! ঝোপের ছোট ছোট শেকড় য়েমন মরুঝড়ে উড়ে যায় সেই ভাবে পালিয়ে যাও| 7 “তোমরা যা তৈরী করেছিলে তাতে তোমাদের বিশ্বাস আছে, বিশ্বাস আছে তোমাদের সম্পদে| তাই তোমরা বন্দী হবে| তোমাদের দেবতা কমোশকেও নির্বাসনে পাঠানো হবে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে| তার যাজক এবং আধিকারিকদেরও বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে| 8 ধ্বংস আসবে প্রত্যেক শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে| কোন শহর পালাতে পারবে না| এই উপত্যকা ধ্বংস হয়ে যাবে| উচ্চ সমতলভূমিও ধ্বংস হবে| প্রভু য়েহেতু বলেছেন এইগুলি ঘটবে, তাই এগুলি ঘটবেই| 9 মোয়াবের সমস্ত জমিতে নুন ছড়িয়ে দাও| এই দেশ শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে| মোয়াবের শহরগুলি শূন্য শহরসমূহে পরিণত হবে| 10 যদি কোন ব্যক্তি প্রভুর নির্দেশ মতো তার তরবারি ব্যবহার না করে এবং হত্যা করে তাহলে সেই ব্যক্তির জীবনে বিপর্য়য আসবে| 11 “মোয়াব কখনও অশান্তি কি তা জানতে পারেনি| মোয়াব ছিল নির্দিষ্ট স্থানে সঞ্চিত রাখা সুরার মতো স্থির| তাকে কখনও এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢালা হয়নি| তাকে কখনও নির্বাসনের জন্য বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়নি| তাই তার স্বাদ আগের মতোই অভিন্ন এবং তার গন্ধেরও পরিবর্তন হয়নি|” 12 প্রভু বলেছেন, “কিন্তু শীঘ্রই আমি কিছু লোক পাঠাব যারা তোমাকে সুরার মতো এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢালবে| তারপর তারা শূন্য পাত্রের মতো আছাড় মেরে তোমাকে টুকরো টুকরো করবে|” 13 তখন মোয়াবের লোকরা তাদের মূর্ত্তি কমোশের জন্য লজ্জিত হবে| বৈথেলে ইস্রায়েলের লোকরাও মূর্ত্তিকে বিশ্বাস করেছিল এবং যখন ঐ মূর্ত্তি তাদের কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারেনি তখন তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিল| মোয়াবের সেই রকমই হবে| 14 “তুমি বলতে পারো না, ‘আমরা ভালো সৈন্য| আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসী|’ 15 শএুপক্ষ মোয়াব আক্রমণ করবে| তারা মোয়াব শহরগুলির ভেতরে ঢুকে সেগুলিকে ধ্বংস করে দেবে| গণ হত্যার সময় মোয়াবের সবচেয়ে শক্তিশালী যুবকরা মারা যাবে|” এই বার্তা হল রাজার| রাজার নাম হল প্রভু সর্বশক্তিমান| 16 মোয়াবের ধ্বংস হবে শীঘ্রই| মোয়াবের পরিসমাপ্তি খুব কাছে এগিয়ে আসছে| 17 মোয়াবের প্রতিবেশী লোকরা, তোমরা ঐ দেশের জন্য চিত্কার করে কাঁদো! লোকরা, তোমরা জানো য়ে মোয়াব কতখানি বিখ্যাত তাই তার জন্য কাঁদো| এই বিলাপ গীত গাও: ‘রাজার শাসন শেষ| মোয়াবের শক্তি ও গৌরব শেষ হয়ে গেছে|’ 18 তোমরা দীবোনের লোকরা, তোমাদের শ্রদ্ধার জায়গা থেকে নেমে এসো| কারণ ধ্বংসকারী আসছে| সে এসে তোমাদের সমস্ত শক্তিশালী শহরগুলোকে ভেঙ্গে গুঁড়িযে দেবে| 19 অরোযের লোকরা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করে দেখো এক জন পুরুষ ও নারী দৌড়ে পালাচ্ছে| ওদের জিজ্ঞেস করো কি হয়েছে| 20 মোয়াব ধ্বংস হবে এবং লজ্জায ভরে যাবে| মোয়াব শুধু কাঁদবে আর কাঁদবে| অর্ণোন নদীতে ঘোষণা হচ্ছে মোয়াব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| 21 উচ্চসমতল ভূমির লোকরাও শাস্তি পাবে| হোলন, য়হস, মেফাত্ শহরে শাস্তির বিধান এসে গিয়েছে| 22 বিচার দণ্ড উপস্থিত হয়েছে দীবোন, নবো এবং বৈত্-দিব্লাথযিম শহরে| 23 বিচার দণ্ড উপস্থিত হয়েছে কিরিযাথযিম, বৈত্গামূল এবং বৈত্-মিযোন শহরে| 24 বিচার দণ্ড এসেছে করিযোত্ এবং বস্রা শহরগুলিতে| বিচার দণ্ড এসেছে মোয়াবের কাছের ও দূরের সমস্ত শহরগুলিতেও| 25 মোয়াবের সমস্ত শক্তি ছিন্ন করা হয়েছে| মোয়াবের বাহু ভেঙে দেওয়া হয়েছে|” প্রভু এই কথা বলেছিলেন| 26 মোয়াব নিজেকে প্রভুর চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ ভেবেছিল| অতএব মোয়াবকে শাস্তি দাও যতক্ষণ না সে মাতালের মতো টলতে টলতে হাঁটে, যতক্ষণ না সে বমি করে এবং তার ওপর নিজেই গড়াগড়ি খায়! মানুষ মোয়াবকে নিয়ে উপহাস করবে| 27 মোয়াব তুমি সব সময় ইস্রায়েলকে নিয়ে হাসাহাসি করেছ| ইস্রায়েল যখন একদল চোরের হাতে ধরা পড়েছিল তখন তুমি তাকে নিয়ে উপহাস করেছো, মজা করেছো| তুমি সব সময় নিজেকে ইস্রায়েলের থেকে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করে এসেছো| যতবার তুমি ইস্রায়েলের সম্বন্ধে কথা বলেছ, তুমি সব সময় এমন ব্যবহার করেছ য়েন তুমি তার চেয়ে ভালো| 28 তোমরা, মোয়াবের লোকরা, তোমদের শহরগুলি ত্যাগ কর এবং পাথর সমূহের মাঝে বাস কর য়েমন করে একটি ঘুঘু পাখী একটি গুহার প্রবেশমুখে তার বাসা তৈরী করে|” 29 “মোয়াবের আত্মম্ভরিতার কথা আমরা শুনেছি| সে ছিল ভীষণ অহঙ্কারী| হামবড়া ভাব দেখিয়ে সে নিজেকে কেউ কেটা প্রমাণ করার চেষ্টা করতো|” 30 প্রভু বলেন, “আমি জানি য়ে মোয়াব খুব তাড়াতাড়ি রেগে যায়| সে নিজেই নিজের বড়াই করে বেড়ায| কিন্তু তার সব বড় বড় কথাই মিথ্য়ে| সে যা বলে তার কিছুই করে দেখাতে পারে না| 31 তাই আমি মোয়াবের জন্য কাঁদি| কাঁদি তার লোকদের জন্য| আমি কাঁদলাম কীর-হেরেসের লোকদের জন্য| 32 যাসের লোকদের জন্য আমি যাসেরের সঙ্গে কাঁদলাম| সিব্মা অতীতে তোমার দ্রাক্ষা ক্ষেত সমুদ্র উপকূল ঘিরে বিস্তৃত ছিল যাসের পর্য়ন্ত| কিন্তু ধ্বংসকারী তোমাদের ফসল ও দ্রাক্ষা নিয়ে গিয়েছে| 33 মোয়াবের বিশাল দ্রাক্ষাক্ষেতগুলির থেকে সমস্ত আনন্দ ও হাসি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে| আমি দ্রাক্ষার থেকে রসের প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছি যাতে আর কখনও দ্রাক্ষারস না বানানো যায়| কেউ আর ওগুলোর ওপর দিয়ে নাচতে নাচতে এবং গাইতে গাইতে না হাঁটে| সেখানে কোন আনন্দের কোলাহল থাকবে না| 34 “হিশ্বোন ও ইলিয়ালী শহরের মানুষ কাঁদছে| সুদূর য়হস শহর থেকেও তাদের কান্না শোনা যাচ্ছে| তাদের কান্না শোনা যাচ্ছে সোযর, হোরেসুযম এবং ইগ্লত্-শলিশীযা শহর থেকেও| এমন কি নিম্রীম নদীর জল শুকিয়ে গিয়েছে| 35 আমি মোয়াবকে সমস্ত উচ্চ স্থানগুলিতে হোমবলি উত্সর্গ করা থেকে বিরত করব| আমি মোয়াবকে তাদের দেবতাদের প্রতি নৈবেদ্য দেওয়া থেকে বিরত করব|” প্রভু এগুলি বললেন| 36 মোয়াবের জন্য আমি খুবই দুঃখিত| শবযাত্রা কালে শোকসঙ্গীতের সুর তোলা বাঁশির মতো আমার হৃদয় কাঁদছে| আমি কীর হেরেসের লোকদের জন্যও দুঃখিত| সুদর সমস্ত ধনসম্পত্তি লুঠ হয়ে গিয়েছে| 37 প্রত্যেকেই শোক পালনের উদ্দেশ্যে মাথা ন্যাড়া করেছে, দাড়ি কেটেছে, হাত কেটে রক্তপাত ঘটিযেছে| প্রত্যেকে শোকের পোশাক পরেছে| 38 মোয়াবে মৃতদের জন্য প্রত্যেক জায়গায় লোকেরা, প্রত্যেক বাড়ির মাথায় এবং সমস্ত জনসাধারণ্যে কাঁদছে| আমি মোয়াবকে শূন্য পাত্রের মতো আছাড় মেরে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করেছি বলেই চারিদিকে এত শোক|” প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন| 39 মোয়াব চুর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে| মানুষ কাঁদছে| মোয়াব আত্মসমর্পণ করেছে এবং এখন লজ্জায পড়ে গেছে বলে অন্য দেশের মানুষ তাকে নিয়ে উপহাস করছে| কিন্তু মোয়াবে যা ঘটেছে তাতে তারা আতঙ্কে পূর্ণ|” 40 প্রভু বলেন, “দেখ! একটি ঈগল পাখী আকাশ থেকে নীচের দিকে ধেয়ে আসছে আর তার ডানার পরিধি বিস্তৃত হচ্ছে মোয়াবের ওপর| 41 মোয়াবের শহরগুলি অধিকৃত হবে| দূর্গ দিয়ে ঘেরা জায়গাগুলিও পরাজিত হবে| সেই সময় মোয়াবের সৈন্যরা প্রসব বেদনায় কাতর মহিলার মতো ভীত হয়ে পড়বে| 42 পুরো মোয়াব দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাবে| কেননা তারা ভেবেছিল য়ে তারা প্রভুর থেকেও বেশী গুরুত্বপূর্ণ|” 43 প্রভু এই কথাগুলি বলেন: “মোয়াবের লোকরা, ভীত হও, গভীর খাদ এবং ফাঁদ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে| 44 লোকরা ভয়ে দৌড়বে এবং গভীর খাদগুলিতে পড়বে| কেউ যদি সেই খাদ বেয়ে বাইরে উঠে আসে, সে মুক্ত হবে না কারণ তাকে ধরবার জন্য ফাঁদ পাতা আছে| আমি মোয়াবে শাস্তির বছর নিয়ে আসব|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 45 “শএুবাহিনীর ভয়ে মানুষ নিরাপত্তার জন্য হিশ্বোন শহরের দিকে ছুটবে কিন্তু সেখানেও তারা নিরাপদ নয়| হিশ্বোনে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে| সীহোনের শহর থেকে এই আগুনের উত্পত্তি| ঐ আগুন মোয়াবের নেতাদের পুড়িয়ে মারবে, পুড়িয়ে মারবে অহঙ্কারী লোকগুলোকে| 46 মোয়াব তোমার সত্যিই দুঃসময় ঘনিয়ে আসছে| তোমার দেবতা কমোশ ও তার লোকরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| তোমার ছেলেমেযেদের বন্দী করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নির্বাসনে| 47 “মোয়াবের লোকদের নির্বাসনে পাঠানো হলেও এমন একদিন আসবে য়েদিন তাদের সবাইকে আবার আমি মোয়াবে ফিরিয়ে আনব|” এই ছিল প্রভুর বার্তা|মোয়াবের বিচারদণ্ড এখানেই শেষ|
1 এই হল প্রভুর বার্তা অম্মোনের লোকদের জন্য| প্রভু বলেছেন: “অম্মোনের লোকরা তোমরা কি ভাবো য়ে ইস্রায়েলের লোকদের কোন সন্তান নেই? তোমরা কি ভাবো সেখানে কোন উত্তরপুরুষ নেই যারা তাদের পিতা মাতার মৃত্যুর পর দেশের ভার নিতে পারে? হয়তো এই কারণেই কি মিল্কম গাদের দেশ নিয়ে নিয়েছিল?” 2 প্রভু বলেন, “সময় আসবে যখন রব্বা অম্মোন দেশের রাজধানী, লোকরাও যুদ্ধের শব্দ শুনতে পাবে| রব্বা শহরও ধ্বংস হবে| শহরের শূন্য পাহাড়গুলির মাথায় পড়ে থাকবে ধ্বংসস্তূপের জঞ্জাল| এই শহরের লোকরা ইস্রায়েলীয়দের দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল কিন্তু পরে ইস্রায়েল তাদের দেশ পুনরায় অধিকার করবে|” প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 3 “হিশ্বোনের মানুষ কাঁদো! কারণ অয় শহর ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| রব্বা এবং অম্মোনের কন্যারা কাঁদো! শোক পোশাক পরে কাঁদো| ছুটে যাও নিরাপদ শহরের খোঁজে| কারণ শএুবাহিনী আসছে| তারা দেবতা মিল্কমকে এবং তার যাজক ও কর্তাদের ধরে নিয়ে যাবে| 4 তোমরা তোমাদের শক্তি নিয়ে বড়াই করছো কিন্তু তোমরা সেই শক্তি হারাবে| তোমরা ভেবেছিলে তোমাদের অর্থ তোমাদের রক্ষা করবে| তোমরা ভেবেছিলে তোমাদের আক্রমণের কথা কেউ কল্পনাও করতে পারে না|” 5 কিন্তু প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: “তোমাদের আমি চারিদিক থেকে সমস্যায় জর্জরিত করে তুলব| তোমরা দৌড়ে পালাবে এবং কেউ তোমাদের আর ফিরিয়ে আনতে পারবে না|” 6 “অম্মোনের লোকদের বন্দী করে নির্বাসনে পাঠানো হলেও সময় আসবে যখন আমি আবার তাদের ফিরিয়ে আনব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 7 এই বার্তা হল ইদোম সম্বন্ধে|প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন: “তৈমনে কি আর কোন জ্ঞান নেই? ইদোমের জ্ঞানী ব্যক্তিরা কি উপদেশ দিতে সক্ষম নয়? তারা কি তাদের জ্ঞান হারিযে ফেলেছে? 8 দদানের লোকরা, দৌড়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়ো| কারণ এষৌকে তার পাপের জন্য আমি শাস্তি দেব| 9 “শ্রমিকরা, যারা দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে দ্রাক্ষা সংগ্রহ করে, তারা ক্ষেতে কিছু দ্রাক্ষা ছেড়ে রেখে যায়| রাত্রে যদি চোর আসে তারা চুরি করে, কিন্তু তারা সবকিছু চুরি করে না| 10 কিন্তু আমি এষৌযের সব কিছু নিয়ে যাবো| যেখানেই সে লুকিয়ে থাকুক আমি তাকে খুঁজে বার করবই| এষৌযের সন্তান, আত্মীযস্বজন এবং প্রতিবেশীদের হত্যা করা হবে| 11 তার সন্তানদের দেখাশোনা করবার জন্য কেউ পড়ে থাকবে না| তার স্ত্রীরা কাউকেই পাবে না যার ওপর নির্ভর করা যায়|” 12 প্রভু যা বলেন তা হল এই: “কিছু মানুষ শাস্তির য়োগ্য না হলেও তাদের এই কষ্ট ভোগ করতে হবে| কিন্তু ইদোম, তুমি শাস্তির য়োগ্য এবং তোমাকে সত্যিই শাস্তি পেতে হবে| তুমি শাস্তির হাত থেকে পালাতে পারবে না|” 13 প্রভু বলেছেন, “আমি আমার শক্তির দ্বারাই এই প্রতিশ্রুতি করছি: আমি প্রতিশ্রুতি করছি য়ে বস্রা শহর ধ্বংস হবে| ঐ শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে| বস্রা শহরকে লোকরা ধ্বংসের উদাহরণ হিসাবে নেবে যখন তারা অন্য শহরগুলিতে খারাপ ঘটনা ঘটাবার ইচ্ছে করবে| অন্য দেশের মানুষ ঐ শহরকে অপমান করবে এবং বস্রা শহরের আশে-পাশের শহরগুলিও চিরদিনের জন্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে|” 14 প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা আমি শুনেছি| এবং দেশগুলিতে তিনি একটি বার্তাসহ তাঁর দূত পাঠালেন: “সৈন্যদের একত্রিত করে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও! সৈন্যবাহিনী সমেত ইদোমের দিকে এগিয়ে চলো| 15 “ইদোম, আমি তোমাকে গুরুত্বহীন করে দেব| মানুষ তোমাকে ঘৃণা করবে| 16 ইদোম, তুমি অন্য দেশগুলিকে ভয় দেখিয়েছিলে| তুমি নিজেকে ভেবেছিলে গুরুত্বপূর্ণ কেউ একজন| কিন্তু আসলে তুমি তোমার অহঙ্কার দ্বারা বোকা হয়ে গিয়েছিলে| তোমার অহঙ্কারই তোমার কাল হল| ইদোম, তুমি পাহাড়ের চূড়ায় একটি সুরক্ষিত বাড়ী তৈরী কর়েছিলে| কিন্তু তুমি যদি ঈগল পাখীরা যেখানে তাদের বাসা বাঁধে সেই উচ্চতায় একটি বাড়ী তৈরী করতে এবং সেখানে থাকতে, তাহলেও তোমাকে আমি টেনে নীচে নামাতাম|” প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন| 17 “ইদোম ধ্বংস হয়ে যাবে| শহরের দুরবস্থা দেখে লোকেরা শোকাহত হবে| ধ্বংপ্রাপ্ত শহরগুলি দেখে লোকরা বিস্ময বিহবল হয়ে যাবে| তারা ধ্বংপ্রাপ্ত শহরগুলির দিকে বিস্ময বিহবল হয়ে শিস দেবে| 18 সদোম ঘমোরা এবং তার আশপাশের শহরের মতো ইদোমও ধ্বংস হয়ে যাবে| কোন মানুষ আর সেখানে জীবিত থাকবে না|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 19 “য়র্দন নদীর তীরবর্তী ঝোপ থেকে কখনো কখনো একটি সিংহ বেরিয়ে আসবে| সেই সিংহ হানা দেবে মেষ ও বাছুরের আস্তানায| আমিও সেই সিংহের মতো হানা দেব ইদোমে| ভয় দেখাব ঐ লোকদের| তারা দৌড়ে পালাবে| তাদের কোন যুবক আমাকে থামতে পারবে না| আমার মত কে আছে? কে আমার প্রতিষ্ঠিত করবে? তাদের কোন মেষপালক (নেতারা) আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে না|” 20 ইদোমের লোকদের নিয়ে প্রভু কি করবেন তার পরিকল্পনা শোন| শোন তৈমনের লোকদের নিয়ে প্রভু কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন| শএুরা ইদোমের পালের (লোকরা) ছোট ছোট ছেলেমেযেদের জোর করে টেনে নিয়ে যাবে| ইদোমের তৃণভূমি শুকিয়ে যাবে তাদের কৃতকর্মের জন্য| 21 ইদোমদের পতনের শব্দে পৃথিবী কেঁপে উঠবে| তাদের কান্না সেই সূফ সাগর পর্য়ন্ত শোনা যাবে| 22 প্রভু হবেন তার শিকারের ওপর উড়ন্ত একটি ঈগল পাখীর মত| তিনি হবেন বস্রা শহরের ওপর তার ডানা ছড়ানো একটি ঈগল পাখীর মত| সেই সময় ইদোমের সৈন্যরা ভয় পেয়ে যাবে এবং শিশু প্রসবরত একটি মহিলার মত কাঁদবে| 23 এই বার্তাটি দম্মেশক সম্বন্ধে:“হমাত্ এবং অর্পদ শহরগুলি আতঙ্কিত কারণ তারা খারাপ খবরটি শুনতে পেয়েছে| তারা নিরুত্সাহ হয়ে পড়েছে| তারা অশান্ত সমুদ্রের মত অশান্ত হয়েছে| 24 দম্মেশক শহর দুর্বল হয়ে গিয়েছে| শহরের মানুষ পালাতে চায়| তারা আতঙ্কিত| কারণ তারা অনুভব করছে যন্ত্রণার কষ্ট| সে যন্ত্রণা য়েন প্রসব বেদনায় কাতর মহিলার মতো|” 25 “দম্মেশক হল সুখের শহর| এখনো সেখানকার মানুষ ঐ ‘মজার শহর’ ছেড়ে চলে যায়নি| 26 সুতরাং শহরের যুবকরা মারা যাবে চৌরাস্তার ওপর| সৈনিকদেরও একই সময়ে হত্যা করা হবে| প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেছেন| 27 “আমি দম্মেশক শহরের প্রাচীরে আগুন লাগিয়ে দেব| ঐ আগুন বিন্হদদের শক্তিশালী দূর্গগুলোকে সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেবে|” 28 এই বার্তা হল কেদর পরিবারগোষ্ঠী এবং হাত্সোরের শাসকবৃন্দের সম্বন্ধে| বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর তাদের যুদ্ধে পরাজিত করেছিল| প্রভু বলেছেন:“যাও কেদর পরিবারগোষ্ঠীকে আক্রমণ করো| ধ্বংস করে দাও পূর্বের লোকদের| 29 তাদের তাঁবু এবং মেষের পালকে নিয়ে যাওয়া হবে| তাদের ধনসম্পদ ও সমস্ত তল্পি-তল্পাও নিয়ে নেওয়া হবে| শএুপক্ষ তাদের উটও নিয়ে যাবে| লোকরা চিত্কার করে বলবে: ‘আমাদের চারিদিকে ভয়ঙ্কর সব ঘটনা ঘটছে|’ 30 হাত্সোরের লোকরা, তাড়াতাড়ি পালাও লুকোনোর গোপন জায়গা খুঁজে নাও|” এই হল প্রভুর বার্তা| “নবূখদ্রিত্সর তোমাদের পরাজিত করার জন্য একটি বেদনাদাযক পরিকল্পনা করেছে|” 31 “সেখানে একটি দেশ আছে য়ে নিজেকে নিরাপদ মনে করে| ঐ দেশের কোন ফটক নেই, সীমানায কোন কাঁটা তারের বেড়াজাল নেই| সেই দেশের আশেপাশে কোন মানুষ থাকে না| প্রভু বললেন, ‘ঐ দেশকে আক্রমণ করো|’ 32 শএুবাহিনী তাদের বাছুর ও উট চুরি করে নিয়ে যাবে| তারা তাদের রুটির কোণা কাটে| বেশ, আমি তাদের দৌড় করিযে নিয়ে যাব পৃথিবীর আরেক প্রান্তে| এবং প্রত্যেক জায়গাতেই তাদের জীবন সমস্যায় জর্জরিত করে তুলব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 33 “হাত্সোর নামের এই দেশটিতে শুধু কুকুর ঘুরে বেড়াবে| এখানে কোন মানুষ থাকবে না| চির কালের জন্য এই দেশ শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে|” 34 যিহূদার রাজা সিদিকিয়র রাজত্বের শুরুতে ভাব্বাদী যিরমিয় প্রভুর কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছিল| বার্তাটি ছিল এলম সম্বন্ধে| 35 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন, “এলমের সব থেকে শক্তিশালী অস্ত্র হল ধনুক| আমি সেই ধনুক শীঘ্রই ভেঙে দেব| 36 আমি এলমের বিরুদ্ধে চারটি বাযুসমূহকে পঠাব| আমি ঐ লোকগুলিকে পৃথিবীর প্রত্যেকটি জায়গায় পাঠাব যেখানে চারটি বাযুসমূহ বয| তারপর তাদের বন্দী করে বিভিন্ন দেশে নির্বাসনে পাঠানো হবে| 37 আমি তাদের শএুদের চোখের সামনে এলমকে টুকরো টুকরো করে কাটব| আমি এলমের ওপর মারাত্মক অশান্তি আনব| আমি আমার রোধ তাদের দেখাব|” এই হল প্রভুর বার্তা| “এলমকে তাড়া করার জন্য আমি আমার তরবারি পাঠাব| এলমের লোকদের শেষ না করা পর্য়ন্ত আমার তরবারি ফিরে আসবে না| 38 আমি এলমকে দেখাব য়ে আমার দমন কর্ত্তৃত্ব আছে| আমি এলমের রাজা ও তার সভাসদদের ধ্বংস করব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 39 “কিন্তু ভবিষ্যতে আবার আমি এলমের জন্য শুভ খবর বয়ে আনব| ভাল ঘটনা ঘটাবো এখানেই|” এই হল প্রভুর বার্তা|
1 প্রভুর এই বার্তাটি বাবিল দেশ ও বাবিলীযদের সম্পর্কে| যিরমিয়র মাধ্যমে প্রভু এই বার্তাগুলি জানিয়েছেন| 2 “সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে এই ঘোষণা করে দাও! পুরো বার্তাটি পড়ে বল ‘বাবিলের জাতিকে বন্দী করা হবে| বেল মূর্ত্তি লজ্জিত হবে| মরোদক মূর্ত্তি খুবই ভীত হয়ে পড়বে| বাবিলের দেবমূর্ত্তিদের লজ্জায পড়তে হবে| তার দেবমূর্ত্তিগুলি প্রচণ্ড ভয় পাবে|’ 3 উত্তরের একটি জাতি বাবিলকে আক্রমণ করবে| এই জাতির আক্রমণে বাবিল এক শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হবে| কোন মানুষই সেখানে বাস করতে পারবে না| শুধু মানুষই নয় জীবজন্তুরাও ঐ জায়গা ছেড়ে পালিয়ে আসবে|” 4 প্রভু বললেন, “ঐ সময়ে ইস্রায়েল ও যিহূদার অধিবাসীরা একত্র মিলিত হবে| কাঁদতে কাঁদতে লোকেরা একত্রে খুঁজে ফিরবে প্রভু তাদের ঈশ্বরকে| 5 ঐসব লোকরা সিয়োনে যাওয়ার পথ জানতে চাইবে| তারপর তারা সিয়োনের উদ্দেশ্যে রওনা হবে| য়েতে য়েতে তারা একে অপরের উদ্দেশ্যে বলবে, ‘এস, আমরা প্রভুর সঙ্গে মিলিত হই| এসো, আমরা এক চুক্তি করি যা চিরকাল স্থায়ী হবে| একটা চুক্তি করা যাক যা আমরা কখনও ভুলব না|’ 6 “আমরা লোকরা হারিযে যাওয়া মেষের মতো| তাদের মেষপালকরা (নেতারা) তাদের ভুলপথে চালিত করেছে| নানা পাহাড়ে পর্বতমালায় তাদের পথহারা করেছে| লোকরা উদভ্রান্তের মতো এক পর্বত থেকে অন্য পর্বতে ভ্রমণ করেছে| তারা তাদের বিশ্রামের জায়গা ভুলে গিয়েছে| 7 যারা আমার লোকদের দেখেছে তারাই তাদের আঘাত করেছে| এবং ঐসব শএুরা বলেছে, ‘আমরা মোটেই অন্যায় করিনি|’ ঐসব লোকরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছে| এই প্রভুই তাদের সত্যিকারের বিশ্রামস্থল| এই প্রভুই তাদের ঈশ্বর যা তাদের পিতারাও বিশ্বাস করত| 8 “বাবিল ছেড়ে পালিয়ে এস| বাবিলদের দেশ ত্যাগ কর| এবং পালের আগুযান ছাগলের মতো হও| (প্রকৃত নেতার মতো জনগণকে নেতৃত্ব দাও|) 9 আমি উত্তরে অনেক তৃজাতিকে একত্রিত করব| এই মিলিত জাতির দল বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হবে| উত্তর দিকের লোকরাই বাবিলের দখল নেবে| ঐ সব জাতির লোকরা বাবিলের দিকে অনেক তীর ছুঁড়বে| ঐ সব তীরগুলি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে খালি হাতে ফিরে না আসা সৈন্যদের মতো হবে| অর্থাত্ প্রতিটি তীরই তার লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করবে| 10 শএুরা কল্দীয লোকদের সমস্ত ধনসম্পদ নিয়ে নেবে| সৈন্যরা যা খুশী তাই নেবে|” প্রভু এইগুলি বললেন| 11 “বাবিল তোমরা উল্লসিত এবং খুশী| তোমরা আমার দেশ অধিকার করেছ| শস্য ক্ষেত্রগুলিতে ছোট ছোট গরুর মত তোমরা চারিদিকে নৃত্য করে বেড়াচ্ছ| তোমাদের উল্লাস য়েন ঘোড়ার সুখী ডাকের মতো|” 12 “এখন তোমার মা হতবুদ্ধি হয়ে যাবে| য়ে মা তোমার জন্মদাত্রী সে বিব্রত হবে| বাবিল সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ হবে| তার অবস্থা হবে শুষ্ক, পরিত্যক্ত মরুভূমির মতো| 13 প্রভু তাঁর রোধ প্রকাশ করবেন| ফলে কোন মানুষই সেখানে বাস করতে পারবে না| বাবিল পুরোপুরি পরিত্যক্ত হবে| “বাবিলের ওপর দিয়ে যারাই যাবে তারাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে| বাবিলের ধ্বংসস্তূপ দেখে প্রত্যেকেই মাথা নাড়বে| 14 “বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও| তীরন্দাজ সৈন্যরা বাবিলের দিকে তীর ছোঁড়| একটা তীরও রেখে দিও না| কারণ বাবিল প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছে|” 15 বাবিলকে চারিদিক থেকে ঘিরে রাখা সৈন্যরা যুদ্ধ বিজয়ের নাদ গর্জন করল| বাবিল আত্মসমর্পণ করেছে| তার প্রাচীর এবং দুর্গগুলি ভেঙে ফেলা হয়েছে| এই সব লোকদের যা শাস্তি পাওনা ছিল প্রভু তা দিচ্ছেন| অন্য জাতিগুলির প্রতি বাবিল য়ে কাজ করেছে জাতিগুলির উচিত্ বাবিলকে তার জন্য য়োগ্য শাস্তি দেওয়া| 16 বাবিলের লোকদের চাষবাস করতে দিও না| তাদের শস্য সংগ্রহ করতে দিও না| বাবিলের সৈন্যরা অনেক বন্দীকে তাদের শহরে এনেছিল| কিন্তু এখন শএু সৈন্যরা এসেছে| তাই এখন ঐসব বন্দীরা তাদের ঘরে ফিরে যাচ্ছে| ঐসব বন্দীরা তাদের নিজেদের দেশে ফিরে যাচ্ছে| 17 “ইস্রায়েল সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মেষের পালের মতো| সিংহসমূহের তাড়া খাওয়া মেষের মত ইস্রায়েল ছড়িয়ে পড়ছে| প্রথম আক্রমণকারী সিংহ হল অশূরের রাজা| এবং শেষ আক্রমণকারী য়ে সিংহ ইস্রায়েলের হাড়গোড় গুঁড়িযে দেবে সে হল বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর|” 18 তাই প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “আমি খুব শীঘ্রই বাবিল এবং তার রাজাকে শাস্তি দেব| অশূরের রাজাকে আমি য়েমন শাস্তি দিয়েছি বাবিলকে আমি তেমনই শাস্তি দেব| 19 আমি ইস্রায়েলকে তার নিজের শস্য ক্ষেতে ফিরিয়ে আনব| কর্মিল পাহাড়ের ওপর এবং বাশনের সমতলে য়ে সমস্ত শস্য জন্মায়, ইস্রায়েলীয়রা তাই খাবে| ইফ্রযিম এবং গিলিয়দের পার্বত্য দেশগুলিতে তারা পেট ভরে খাবে|” 20 প্রভু বলেন, “সেই সময় লোকরা ইস্রায়েলের দোষএুটি খুঁজতে জোরদার ভাবে চেষ্টা করবে| কিন্তু খুঁজে পাওয়ার মত কোন দোষ থাকবে না| লোকরা যিহূদার পাপও খুঁজে বের করতে চেষ্টা করবে| কিন্তু তারা কোন পাপ খুঁজে পাবে না| কেন? কারণ আমিই ইস্রায়েলের ও যিহূদার কিছু বেঁচে যাওয়া লোকদের পাপসমূহ ক্ষমা করব এবং আমি তাদের রক্ষা করব|” 21 প্রভু বললেন, “মরাথযিম আক্রমণ কর| পকোদের লোকদের আক্রমণ কর| তাদের হত্যা করে পুরোপুরি ধ্বংস কর| আমি যা আদেশ করছি তাই কর| 22 “গোটা দেশ জুড়ে যুদ্ধের দামামা শোনা যাচ্ছে| এটা ব্যাপক ধ্বংসের দামামা| 23 সমগ্র পৃথিবীর হাতুড়ি বলে পরিচিত ছিল বাবিল| ‘কিন্তু এখন এই হাতুড়িই খণ্ড বিখণ্ড|’ সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে বাবিলই সব চেয়ে বেশী ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে| 24 বাবিল, তোমার জন্য আমি একটা ফাঁদ পেতেছিলাম| এবং তা জানার আগেই সেই ফাঁদে তুমি ধরা পড়েছ| তোমরা প্রভুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছ| তাই তোমাদের খুঁজে বন্দী করা হয়েছে| 25 প্রভু তাঁর অস্ত্র ভাণ্ডার খুললেন| প্রভু তাঁর রোধর অস্ত্রগুলি বের করে আনলেন| প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ঐসব অস্ত্রগুলি আনলেন কারণ কলদীযদের দেশে তাঁর কিছু কাজ আছে| 26 “দূর দেশের লোকরা, তোমরা বাবিলের বিরুদ্ধে দাঁড়াও| বাবিলের শস্য ভাণ্ডার ভেঙ্গে খুলে ফেল| বাবিলকে পুরোপুরি ধ্বংস করো| কাউকে জীবিত রেখো না| অনেক শস্যকে য়েমন স্তূপীকৃত করা হয়, তেমন বাবিলবাসীদের মৃতদেহগুলি স্তূপীকৃত কর| 27 বাবিলের সমস্ত যুবক ষাঁড়দের (লোকদের) হত্যা কর| জন্তুদের মত তাদের বধ কর| তাদের পরাস্ত করার সময় এসে গিয়েছে| তাই এটা তাদের পক্ষে খুবই খারাপ হবে| তাদের শাস্তি পাওয়ার সময় হয়েছে| 28 বাবিল থেকে লোক ছুটে পালাচ্ছে| তারা ঐ দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে| এই সব লোকরা সিয়োনের দিকে আসছে| তারা প্রত্যেককে প্রভুর ধ্বংসলীলার কথা বলছে| তারা লোকদের বলছে য়ে, প্রভু বাবিলকে উপযুক্ত শাস্তি দিচ্ছেন| বাবিল প্রভুর উপাসনাগৃহ ধ্বংস করেছিল তাই প্রভু বাবিলকে ধ্বংস করছেন| 29 “তীরন্দাজদের ডাকো| তাদের বাবিলকে আক্রমণ করতে বল| ঐ সব তীরন্দাজদের শহরের চারিদিকে ঘিরে ফেলতে বল| কাউকে পালাতে দিও না| বাবিলকে তাদের অপকর্মের উপযুক্ত শাস্তি দাও| সে অন্য জাতিদের জন্য যা করেছিল, তাকেও তাই করো| বাবিলীযরা প্রভুকে সম্মান করেনি| তারা ইস্রায়েলের পবিত্র এক জনের সঙ্গে খুব রূঢ় ব্যবহার করেছে| অতএব বাবিলকে শাস্তি দাও| 30 বাবিলের যুবকদের রাস্তায় হত্যা করা হবে| তার সমস্ত সৈন্য ঐদিন মারা যাবে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 31 “বাবিলের লোকরা, তোমরা খুবই অহঙ্কারী| এবং আমি তোমাদের বিরুদ্ধে|” আমাদের মালিক, প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেন| 32 গর্বিত বাবিল হোঁচট খাবে এবং পড়ে যাবে| কেউই তাকে তুলে ধরতে এগিয়ে আসবে না| আমি তার শহরগুলিতে আগুন ধরিযে দেব| এই আগুন শহরের প্রত্যেককে এবং তার চারপাশের প্রত্যেকটি জিনিষকে সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেবে|” 33 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন: “ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকরা হল দাস| শএুরা তাদের নিয়ে গিয়েছিল| এবং শএুরা ইস্রায়েলের লোকদের য়েতে দেয়নি| 34 কিন্তু ঈশ্বর ঐসব লোকদের ফিরিয়ে আনবেন| তাঁর নাম হল প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান| তিনি ঐসব লোকদের সর্বশক্তি দিয়ে রক্ষা করবেন| তিনি তাদের রক্ষা করবেন যাতে তিনি দেশটিকে বিশ্রাম দিতে পারেন| কিন্তু বাবিলবাসীদের কোন বিশ্রাম থাকবে না|” 35 প্রভু বলেন, “তরবারি, বাবিলীযদের তুমি হত্যা কর, রাজার সভাসদদের এবং জ্ঞানী লোকদের হত্যা কর| 36 তরবারি বাবিলের যাজকদের হত্যা কর| ঐসব যাজকরা বোকা লোকদের মত হয়ে যাবে| তরবারি, বাবিলের সৈন্যদের তুমি হত্যা কর| ঐসব সৈন্যরা ভয়ে পূর্ণ হয়ে যাবে| 37 তরবারি বাবিলের ঘোড়া এবং যুদ্ধরথদের হত্যা কর| তরবারি অন্য দেশ থেকে ভাড়া করে আনা সৈন্যদের হত্যা কর| ঐসব লোকরা ভযার্ত মহিলার মতো হবে| তরবারি বাবিলের সম্পদ ধ্বংস কর| ঐসব সম্পদ নিয়ে যাওয়া হবে| 38 তরবারি বাবিলের জলকে আঘাত কর| ঐসব জল শুকিয়ে যাবে| বাবিলের অসংখ্য মূর্ত্তি আছে| বাবিলের লোকরা য়ে বোকা ঐসব মূর্ত্তিরা সেটাই প্রমাণ করে| তাই ঐসব লোকদের ভাগ্য়ে অঘটন ঘটবে| 39 “বাবিল আর কখনও লোকে পরিপূর্ণ হবে না| বন্য কুকুরসমূহ, উটপাখিরা এবং মরুভূমির অন্যান্য জন্তু জানোযাররা সেখানে বাস করবে| কিন্তু কোন লোকই আর সেখানে কোন দিনের জন্য বাস করবে না| 40 ঈশ্বর সদোম এবং ঘমোরাকে তাদের চারদিকের শহরগুলিসহ পুরোপুরি ধ্বংস করেছেন| এবং কোন লোকই ঐসব শহরগুলিতে এখন বাস করে না| একই ভাবে কোন লোকই বাবিলে বাস করবে না| এবং কোন লোকই আর সেখানে কোনদিন বাস করতে যাবে না| 41 “দেখ, উত্তরের লোকরা আসছে| তারা একটি শক্তিশালী জাতি থেকে আসছে| পৃথিবীর চারিদিক থেকে অনেক রাজারা একসঙ্গে আসছে| 42 তাদের সৈন্যদের তীর-বল্লম আছে| সৈন্যরা নিষ্ঠুর| তাদের কোন মাযা মমতা নেই| উত্তাল সমুদ্র গর্জনের মতো সৈন্যরা তাদের ঘোড়ায় চড়ে আসছে| বাবিল শহর, সৈন্যরা তোমাকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত| তারা তাদের জায়গায় দাঁড়িয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে| 43 বাবিলের রাজা ঐসব সৈন্যদের সম্বন্ধে শুনল| এবং সে ভীষণ ভয়চকিত হয়ে পড়ল| সে এতই ভীত হয়ে পড়ল য়ে তার হাত অবশ হয়ে পড়ল| তার ভয় তাকে প্রসব বেদনায় কাতরানো মহিলার মতো যন্ত্রণা দিতে থাকল|” 44 প্রভু বলেন, “মাঝে মাঝে য়র্দন নদীর পাশ্ববর্তী ঘন ঝোপঝাড় থেকে একটি সিংহ আসবে| যেখানে লোকরা জন্তু জানোযার রেখেছে সেই মাঠের ওপর দিয়ে সিংহটি হেঁটে যাবে| এবং সমস্ত জন্তুরা ভয়ে পালাবে| আমি ঐ সিংহটির মতো হব| আমি বাবিলবাসীদের তাদের দেশ থেকে তাড়া করব| এটা করার জন্য আমি কাকেই বা মনোনীত করতে পারতাম? কেউই আমার মতো নয়| আমাকে মোকাবিলা করার ক্ষমতা কারোর নেই| তাই আমি এটা করবই| কোন মেষপালকই আমাকে ধাওযা করতে আসবে না| আমি বাবিলের লোকদের তাড়া করে নিয়ে যাব|” 45 বাবিলের প্রতি প্রভু যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই পরিকল্পনার কথা শোন| শোন, বাবিলের লোকদের প্রতি প্রভুর সিদ্ধান্তের কথা| শএুরা বাবিলের পালের (লোক) ছোট ছেলেমেযেদের জোর করে টেনে নিয়ে যাবে| তাদের কৃতকর্মের জন্যই বাবিলের চারণভূমি শূন্য হবে| 46 বাবিলের পতন হবে| এবং সেই পতনে পৃথিবী কেঁপে উঠবে| সমস্ত জাতির লোকরা বাবিলের এই ধ্বংসের কথা শুনবে|
1 প্রভু বললেন, “আমি শক্তিশালী বাতাস প্রবাহিত করব| আমি এই শক্তিশালী বাতাসকে বাবিলের বিরুদ্ধে এবং ‘লেব-কামাই’এর লোকদের বিরুদ্ধে বওযাবো| 2 আমি বাবিলকে শষ্য থেকে তুষ ঝেড়ে ফেলবার মত করবার জন্য লোক পাঠাব এবং তারা বাবিলকে তুষের মত করে দেবে| তারা বাবিল থেকে সবকিছু নিয়ে নেবে| সেনারা শহর ঘিরে রাখবে এবং ভয়ঙ্কর ধ্বংস ঘটবে| 3 বাবিলের সেনারা তাদের তীর ধনুক ব্যবহার করবে না| তারা এমন কি তাদের অস্ত্রশস্ত্রও তুলবে না| বাবিলের যুবকদের জন্য দুঃখিত হযো না| তার সেনাদের পুরোপুরি ধ্বংস কর| 4 কল্দীযদের দেশে বাবিলের সৈন্যদের হত্যা করা হবে| বাবিলের রাস্তায় তারা গুরুতরভাবে আহত হবে|” 5 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েল এবং যিহূদাকে বিধ্বা মহিলাদের মতো একাকী ফেলে চলে যান নি| ঈশ্বর ঐসব লোকদের ত্যাগ করেন নি| না! ঐ লোকরা দোষী| তারা ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে ত্যাগ করেছিল| তারা ত্যাগ করলেও ঈশ্বর তাদের ত্যাগ করেন নি| 6 বাবিল থেকে পালিয়ে যাও| পালাও নিজেদের জীবন বাঁচাতে| বাবিলের পাপের জন্য সেখানে থেকে নিহত হযো না| তাদের অপকর্মের জন্য ঈশ্বরের বাবিলীযদের শাস্তি দেবার সময় এসেছে| বাবিল তার য়োগ্য শাস্তি পাবেই| 7 বাবিল ছিল প্রভুর হাতের স্বর্ণ পেয়ালার মতো| বাবিল গোটা পৃথিবীকে মদ্যপ বানিয়েছে| জাতিগুলি বাবিলের মদ পান করেছে| তাই তাদের মস্তিষ্কের এই বিকৃতি| 8 বাবিলের হঠাত্ পতন হবে| ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে| তার জন্য কাঁদো| তার যন্ত্রণা উপশমের জন্য ওষুধ দাও! সে সুস্থ হতেও পারে| 9 আমরা বাবিলকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি| কিন্তু সে সুস্থ হতে পারবে না| তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত্ তাকে ত্যাগ করে নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া| স্বর্গের ঈশ্বর ঠিক করবেন তার শাস্তি| তিনিই ঠিক করবেন বাবিলে কি হবে| 10 প্রভু আমাদের জন্যও প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করেছেন| এসো, সিয়োন সেই সব কথা বলো| এখন বলো, প্রভু আমাদের ঈশ্বরের কৃত কর্মের কথা| 11 তীরগুলি তীক্ষ্ণ করো| বর্ম তুলে নাও| ঈশ্বর মাদীয় রাজাদের উত্তেজিত করে তুললেন| তিনি তাদের উত্তেজিত করে তুলবেন| কারণ তিনি বাবিলকে ধ্বংস করতে চান| বাবিলের লোকদের প্রভু তাদের পাওনা শাস্তি দেবেন| জেরুশালেমে প্রভুর উপাসনাগৃহগুলি ধ্বংস করেছিল বাবিল| এর জন্য য়ে শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত্ প্রভু তাই দেবেন| 12 বাবিলের প্রাচীরগুলির বিরুদ্ধে একটি ধ্বজা তোল| আরও রক্ষী আনো| নজরদার নিয়োগ করো| তৈরী হও গোপন আক্রমণের জন্য| প্রভু নিজের পরিকল্পনা মত কাজ করে যাবেন| বাবিলের লোকদের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর কথা মত সবকিছুই করবেন| 13 বাবিল তুমি গভীর জলের কাছে বাস করো| কোষাধ্যক্ষদের সঙ্গে সঙ্গে তুমিও ধনী| তোমার সমাপ্তি সমাগত| এটাই তোমার ধ্বংসের সময়| 14 প্রভু সর্বশক্তিমান এই প্রতিশ্রুতির সময় তাঁর নাম ব্যবহার করেছিলেন: “বাবিল আমি তোমাকে বহু শএু সৈন্য দিয়ে ভরে দেব| তারা দ্রুত শস্য বিনাশকারী কীটেদের মতো হবে| তারা তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় করবে এবং তোমার ওপর দাঁড়িয়ে বিজয় উল্লাস করবে|” 15 প্রভু তাঁর মহান ক্ষমতাবলে পৃথিবীর সৃষ্টি করেছেন| এই বিশ্ব গড়তে তিনি তাঁর জ্ঞানকে ব্যবহার করেছিলেন| আকাশকে বিস্তৃত করতে তাঁর নিজের বুদ্ধি ব্যবহার করেছেন| 16 যখন তিনি বজ্র নির্ঘোষ করেন, আকাশের জল গর্জন করে ওঠে| তিনিই পৃথিবীর ওপরে মেঘ পাঠান| তিনি বৃষ্টির সঙ্গে বিদ্য়ুতের ঝলকানি পাঠান| তিনিই তাঁর গুদাম থেকে এনে দেন বাতাস| 17 কিন্তু মানুষ এতই বোকা য়ে তারা বুঝতে পারে না ঈশ্বর কি করেছেন| দক্ষ কারিগররা ভ্রান্ত দেবতার মূর্ত্তি বানায়| সেই মূর্ত্তি একমাত্র ভ্রান্ত দেবতারই| সেগুলি য়ে করেছে সেই কারিগরের বোকামি তারা দেখিয়ে দেয়| সেই মূর্ত্তি জীবন্ত নয়| 18 সেই মূর্ত্তিগুলি মূল্যহীন| যারা বানিয়েছে তারা নিজেরাই হাসির খোরাক হয়েছে| তাদের বিচারের সময় আসবে এবং মূর্ত্তিগুলি ধ্বংস হবে| 19 কিন্তু যাকোবের নিযতি (ঈশ্বর) ঐ মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর মত নয়| মানুষ ঈশ্বর বানায় না, ঈশ্বরই মানুষ বানায়| সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর| তাঁর নাম প্রভু সর্বশক্তিমান| 20 প্রভু বললেন, “বাবিল, তুমি আমার গদা| জাতিগুলিকে ধ্বংস করতে আমি তোমাকে ব্যবহার করেছি| ব্যবহার করেছি তোমাকে রাজ্যগুলি ধ্বংসের কাজে| 21 অশ্ব ও অশ্বারোহীকে ধ্বংসের কাজে তোমাকে ব্যবহার করেছি| আমি তোমাকে রথসমূহ ও তাদের চালকদের ধ্বংস করবার জন্য ব্যবহার করেছি| 22 তুমি আমার দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছো পুরুষ ও মহিলা ধ্বংসের কাজে, আমি তোমাকে ব্যবহার করেছিপুরুষ, বৃদ্ধ ও যুবকদের বিনাশের কাজে| তরুণ তরুণীদের বিনাশের কাজে তোমাকে ব্যবহার করেছি| 23 আমি তোমাকে মেষপালক ও তার পালকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবার জন্য ব্যবহার করেছি| কৃষকদের ও গরুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবার জন্য তোমাকে ব্যবহার করেছি| রাজ্যপাল ও গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকদের চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে তোমাকে ব্যবহার করেছি| 24 কিন্তু বাবিলকে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেব| সিয়োনের প্রতি য়ে সমস্ত কুকর্মগুলি তারা করেছিল তার জন্য আমি তাদের মূল্য দিতে বাধ্য করব| যিহূদা আমি তোমার সামনে ওদের শাস্তি দেব|” এই সব প্রভু বলেছেন| 25 প্রভু বলেন, “বাবিল, তুমি ধ্বংসকারী পাহাড়ের মতো এবং আমি তোমার বিরুদ্ধে| বাবিল, তুমি গোটা দেশকে ধ্বংস করেছো, আমি তোমার বিরুদ্ধে| আমি তোমার বিরুদ্ধে হাত রাখব| আমি তোমাকে দূরারোহ পাহাড়গুলির থেকে গড়িযে ফেলে দেব| আমি তোমাকে পুড়ে যাওয়া পাহাড়ে পরিণত করব| 26 মানুষ বাড়ি তৈরী করতে বাবিল থেকে পাথর নিতে পারবে না| ভিত্তি প্রস্তরসমূহের মত ব্যবহার করবার জন্য যথেষ্ট বড় পাথর সমূহও পাওয়া যাবে না| কেন? কারণ তোমার শহর চির কালের মত ভাঙ্গা পাথরের কুচির মতো হবে|” এই সব প্রভু বলেছেন| 27 “হাতে যুদ্ধ ধ্বজা তুলে নাও! সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে ভেরী বাজাও| বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সব জাতিকে প্রস্তুত করো| বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অরারট, মিন্নি ও অস্কিনস রাজ্যকে ডাকো| 28 তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সেনানাযক বেছে নাও| এত বেশী ঘোড়া পাঠাও যাতে ওরা শস্য বিনাশকারী পতঙ্গ পালের মত হয়ে ওঠে| জাতিগুলিকে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য প্রস্তুত করো| মাদীয় রাজাদের তৈরী করো| তাদের রাজ্যপালদের ও গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকদের প্রস্তুত করো| 29 দেশটা যন্ত্রণায় কাতরানোর মতো কাঁপবে| বাবিলের জন্য প্রভুর য়ে পরিকল্পনা করছে সেগুলো পালনের সময় কেঁপে উঠবে| বাবিলকে পরিত্যক্ত মরুতে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রভুর| 30 বাবিলের সেনারা যুদ্ধ থামিয়ে দুর্গে থেকে যাবে| তাদের শক্তি চলে গিয়েছে| তারা হল ভীত মহিলাদের মতো| বাবিলের বাড়িগুলি জ্বলছে| তার ফটকগুলির আগলসমূহ ভেঙ্গে গিয়েছে| 31 এক জন বার্তাবাহককে অন্য জন অনুসরণ করছে| বার্তাবাহকরাই বার্তাবাহকদের অনুসরণ করছে| তারা বাবিলের রাজাকে বলে য়ে তার সমগ্র শহর অধিকৃত হয়ে গিয়েছে| 32 য়ে জায়গা দিয়ে মানুষ নদী পার হয় সেই জায়গাও অধিকৃত| নদীর ধার বরাবর ঘাসের জমি পুড়ছে| বাবিলের সব লোকরাই আতঙ্কিত|” 33 সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “বাবিল হচ্ছে একটি মাড়ানো ভূমির মতো| ফসল কাটার সময় লোকরা শস্য ঝাড়ে তাকে তুষ থেকে আলাদা করবার জন্য| বাবিলকে মারবার সময় খুব শীঘ্রই আসছে|” 34 সিয়োনের লোকরা বলবে, “বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর অতীতে আমাদের ধ্বংস করেছে| অতীতে নবূখদ্রিত্সর আমাদের আঘাত করেছে| আমাদের লোকদের দূরে নিয়ে গিয়ে আমাদের খালি পাত্রের মতো করে ছেড়েছে| সে আমাদের সমস্ত ভালো জিনিষগুলি নিয়ে গিয়েছিল এবং আমাদের ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল| সে এক জন দৈত্যাকার দানব য়ে ভরপেট না হওয়া পর্য়ন্ত সব কিছুকে খেযে নেয| সে আমাদের যা কিছু ভালো ছিল তা নিয়ে নিয়ে আমাদের দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে| 35 বাবিল আমাদের আঘাত করতে ভয়ঙ্কর জিনিস ঘটিযেছিল| এখন আমরা চাই য়ে বাবিলে ঐসব ঘটনা ঘটুক|” সিয়োনের লোকরা ঐসব জিনিসগুলির কথা বলবে: “আমাদের লোকদের হত্যা করার জন্য বাবিলের লোকরা দোষী| এখন অপকর্মের জন্য তাদের শাস্তি হচ্ছে|” জেরুশালেম শহর ঐসব জিনিসগুলির কথা বলবে| 36 তাই প্রভু বলেন, “যিহূদা, আমি তোমাকে রক্ষা করব| বাবিলের শাস্তি প্রদান আমি নিশ্চিত করব| আমি বাবিলের সমুদ্রের জল শুকিয়ে দেব এবং তার জলের প্রবাহ বন্ধ করে দেব| 37 বাবিল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে| বাবিল বন্য কুকুরের বাসস্থান হবে| ধ্বংসস্তূপ দেখে লোকরা অবাক হয়ে যাবে| বাবিলের কথা ভাবার সময় লোকরা তাদের মাথা নাড়বে| বাবিল এমন একটা জায়গায় পরিণত হবে যেখানে কোন লোক বাস করবে না| 38 “বাবিলের লোকরা গর্জনরত সিংহের মত| তারা সিংহশাবকের মত গর্জন করছে| 39 ঐসব লোকরা শক্তিশালী সিংহের মতো আচরণ করছে| আমি তাদের জন্য একটি ভোজসভা দেব| আমি তাদের দ্রাক্ষারস পান করাব| তারা সুসময়ের মতো হাসবে এবং তারপর তারা চির দিনের জন্য ঘুমিযে পড়বে| তারা আর কখনও উঠে দাঁড়াবে না|” প্রভু এই কথাগুলি বলেন| 40 “বাবিলের লোকরা বধ হওয়ার জন্য অপেক্ষারত মেষ এবং ছাগলের মত হবে| আমি তাদের কসাই-খানায নিয়ে যাব| 41 “শেশক” পরাজিত হবে| পৃথিবীর সব চেয়ে গর্বিত শহর বন্দী হবে| অন্যান্য জাতির লোকরা বাবিলের দিকে তাকাবে| এবং তারা এমন সব জিনিস দেখবে য়ে ভয় পাবে| 42 সমুদ্র বাবিলের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে| এর গর্জনরত ঢেউ তাকে আচ্ছাদিত করবে| 43 বাবিলের শহরগুলি ধ্বংস প্রাপ্ত হবে এবং শূন্য হয়ে যাবে| বাবিল শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হবে| এটা জনমানবহীন একটা দেশে পরিণত হবে| লোকরা বাবিলের ওপর দিয়ে চলাচলও করতে পারবে না| 44 আমি বাবিলে বেল মূর্ত্তিকে শাস্তি দেব| ঐ মূর্ত্তি যাদের গিলে খেযেছে বমি করিযে তাদের বের করে আনব| বাবিলের চারি দিকের প্রাচীর ভেঙ্গে পড়বে| এবং অন্য জাতির লোকরা বাবিলে আসা বন্ধ করবে| 45 আমার লোকরা, তোমরা বাবিল ছেড়ে বেরিয়ে এস| নিজেদের জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পালিয়ে এস| প্রভুর ভয়ঙ্কর রোধ থেকে দূরে সরে এস| 46 “আমার লোকরা, আশা হারিযো না| গুজব ছড়াবে কিন্তু তোমরা ভীত হবে না| একটা গুজব আসবে এবছরে| অন্য গুজব আসবে পরের বছরে| দেশে ভয়ঙ্কর যুদ্ধের গুজব আসবে| শাসকরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এই গুজবও আসবে| 47 বাবিলের মূর্ত্তিগুলোকে শাস্তি দেওয়ার সময় নিশ্চিত ভাবেই আসবে| আমি তাদের নিশ্চয়ই শাস্তি দেব| এবং গোটা বাবিল দেশ তাতে লজ্জিত হবে| রাস্তার ওপরে অনেক মৃতদেহ পড়ে থাকবে| 48 তখন স্বর্গ ও মর্ত এবং তার মধ্যে যত কিছু আছে বাবিলের ব্যাপারে আনন্দে উল্লাস করবে| তারা উল্লাস করবে কারণ উত্তর থেকে একটি সেনাবাহিনী এসে বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে|” প্রভু এই কথাগুলি বলেন| 49 “বাবিল ইস্রায়েলীয়দের হত্যা করেছিল| বাবিল পৃথিবীর প্রত্যেকটি জায়গার লোকদের হত্যা করেছিল| তাই বাবিলের পতন অবশ্যই হবে| 50 তোমরা লোকরা, যারা তরবারির হাত থেকে পালিয়ে এসেছে, তোমরা যদি বাঁচতে চাও তবে তোমাদের বাবিল পরিত্যাগ করতে হবে| তাড়াতাড়ি কর| অপেক্ষা করো না| তোমরা দূরবর্তী দেশে আছ| কিন্তু যেখানেই থাক না কেন প্রভুকে স্মরণ কর| এবং সেই সঙ্গে জেরুশালেমকেও স্মরণ কর| 51 “আমরা যিহূদার লোকরা লজ্জিত| আমাদের অপমান করা হয়েছে| কেন? কারণ বিদেশীরা এসে পবিত্রস্থান প্রভুর উপাসনাগৃহে ঢুকে পড়েছে|” 52 প্রভু বলেন, “বাবিলের মূর্ত্তিদের আমার শাস্তি দেওয়ার সময় আসছে| সে সময় ঐ দেশের সর্বত্র আহত লোকরা যন্ত্রণায় কাঁদবে| 53 বাবিল হয়তো আকাশ না ছোঁযা পর্য়ন্ত উঠতে পারে| বাবিল তার দুর্গগুলিকে হয়তো শক্তিশালী করতে পারে| কিন্তু আমি ঐ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য লোক পাঠাব| এবং ঐ সব লোকরা তাকে ধ্বংস করবে|” প্রভু এই কথাগুলি বলেন| 54 “আমরা বাবিলের লোকদের কান্না শুনতে পাব| লোকরা বাবিলের সমস্ত জিনিসপত্র ধ্বংস করছে| সেই ধ্বংসের শব্দ আমরা শুনতে পাব| 55 প্রভু বাবিলকে খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস করবেন| তিনি শহরের চিত্কার শব্দ থামিয়ে দেবেন| শএুরা সমুদ্র গর্জনের মতো চিত্কার করতে করতে আসবে| লোকরা চারদিক থেকে সে শব্দ শুনতে পাবে| 56 সেনারা আসবে এবং বাবিলকে ধ্বংস করবে| বাবিলের সৈন্যদের বন্দী করা হবে| তাদের ধনুক ভেঙ্গে দেওয়া হবে| কেন? কারণ প্রভু এখানকার লোকদের তাদের অপকর্মের শাস্তি দিচ্ছেন| প্রভু তাদের য়োগ্য শাস্তি পুরোপুরি দেবেন| 57 আমি বাবিলের সমস্ত জ্ঞানী মানুষ এবং গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের মাতাল করব| আমি রাজ্যপাল, আধিকারিক এবং সেনাদেরও মাতাল করব| তারপর তারা চির কালের জন্য ঘুমিযে পড়বে| তারা আর কখনও জেগে উঠবে না|”রাজা এই কথাগুলি বললেন| তাঁর নাম প্রভু সর্বশক্তিমান| 58 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “বাবিলের মোটা শক্তিশালী দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলা হবে| তার উঁচু ফটকগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হবে| বাবিলের লোকরা কঠোর পরিশ্রম করবে| কিন্তু এটা তাদের কোনও কাজেই আসবে না| শহরকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে গিয়ে তারা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়বে| কিন্তু তারা শুধুমাত্র জ্বলন্ত শিখার জ্বালানী হবে|” 59 এটা হল সেই বার্তা য়েটা যিরমিয় উচ্চপদস্থ কর্মচারী সরায়কে দিয়েছিলো| সরায় হল নেরিযের পুত্র| নেরিয হল মহসেযের পুত্র| সরায় যিহূদার রাজা সিদিকিযের সঙ্গে বাবিলে গিয়েছিল| এটা সিদিকিযের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছরে ঘটেছিল| সে সময়ে যিরমিয় সরায়কে এই বার্তা দিয়েছিল| 60 বাবিলে য়ে সব ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে তা যিরমিয় একটা বিশেষ ধরণের খাতায় লিখেছিল| বাবিল সম্পর্কে যাবতীয় ঘটনার কথা সে লিখেছিল| 61 যিরমিয় সরায়কে বলল, “সরায় বাবিলে যাও| বার্তাগুলি সেখানে পাঠ করবে| সবাই য়েন নিশ্চিত ভাবে এই বার্তাগুলি শুনতে পায়| 62 তারপর বল: ‘প্রভু আপনি বলেছিলেন য়ে আপনি বাবিলকে ধ্বংস করবেন| আপনি বাবিলকে এমন ভাবে ধ্বংস করবেন য়ে সেখানে কোন জনপ্রাণী বেঁচে থাকবে না| এই দেশটি চির কালের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে|’ 63 এই খাতাটি পাঠ করার শেষে, এর সঙ্গে একটি পাথর বাঁধবে| তারপর এই খাতাটি ফরাত্ নদীর জলে ছুঁড়ে ফেলে দেবে| 64 তারপর বলবে, ‘একই ভাবে, বাবিলও ডুবে যাবে| বাবিল আর কখনও উঠে দাঁড়াবে না| বাবিল ডুবে যাবে কারণ ভয়ঙ্কর সব ঘটনা আমি এখানে ঘটাব|”‘য়িরমিযের কথা এখানে শেষ হল|
1 সিদিকিয় 21বছর বযসে যিহূদার রাজা হন| তিনি 11 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন| সিদিকিযের মা হলেন হমুটল| তিনি ছিলেন য়িরমিযের কন্যা| লিব্না নামক শহরে হমুটল থাকতেন| 2 সিদিকিয় পাপ কাজ করে বেড়াতেন| অনেকটা রাজা যিহোয়াকীমের মতো| সিদিকিযের এইসব অসত্ কর্মসমূহ প্রভু পছন্দ করেন নি| 3 প্রভু জেরুশালেম ও যিহূদার প্রতি এত রেগে গেলেন য়ে অবশেষে তিনি তাদের তাঁর সামনে থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন|সিদিকিয় বাবিলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন| 4 সুতরাং সিদিকিযের শাসনের নবমতম বছরের দশম মাসের দশম দিনে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর জেরুশালেম আক্রমণ করেন| বাবিলের রাজার সঙ্গে তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী ছিল| তারা জেরুশালেমের বাইরে অস্থায়ী শিবির গড়ে| তারপর তারা উঁচু প্রাচীরের মত বাঁধ তৈরী করল যাতে এই প্রাচীরগুলির ওপর উঠে অনায়াসে জেরুশালেমে প্রবেশ করা যায়| 5 জেরুশালেম শহর বাবিলের সেনাদের দ্বারা সিদিকিযের রাজত্ব কালের প্রায একাদশ বছর পর্য়ন্ত অবরুদ্ধ ছিল| 6 ঐ বছরের চতুর্থ মাসের নবম দিনে শহরের সমস্ত খাদ্য নিঃশেষিত হয়ে গেল| লোকদের জন্য আর কোন খাদ্যই রইল না| 7 ক্ষুধায পাগল প্রায অবরুদ্ধ শহরবাসীদের ঠিক ঐ সময়ই বাবিলের সৈন্যরা আক্রমণ করল| য়িরমিযর সৈন্যরা রাতের অন্ধকারে দুই প্রাচীরের মধ্যবর্তী প্রবেশদ্বার দিয়ে পালাতে লাগল| বাবিলের সেনারা চারিদিক ঘিরে থাকলেও রাজার বাগানের কাছের গেট দিয়ে জেরুশালেমের সেনারা শহর ছাড়তে থাকে| এই পলায়নরত সেনাদের গন্তব্যস্থল ছিল দূরবর্তী মরুভূমি| 8 বাবিলের সৈন্যদল সিদিকিয়কে তাড়া করল| অবশেষে য়িরীহোর সমতলভূমিতে তারা তাকে ধরতে সফল হয়| সিদিকিযের সব সৈন্যরা পালিয়ে যায়| 9 বন্দী সিদিকিয়কে রিব্লা শহরে বাবিলের রাজার কাছে হাজির করানো হয়| হমাত্ দেশেই রিব্লা শহর| এখানে বাবিলের রাজা সিদিকিযের শাস্তি নির্ধারণ করে| 10 বাবিলের রাজা প্রথমে সিদিকিযের পুত্রকে হত্যা করে| নিজ সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে সিদিকিয়কে| বাবিলের রাজা সিদিকিয়কে তাঁর পুত্রদের হত্যা সাক্ষী হতে বাধ্য করেছিলেন| তিনি যিহূদার রাজকর্মচারীদেরও রিব্লাতে হত্যা করেছিলেন| 11 এর পর বাবিলের রাজার নির্দেশে সিদিকিযের দুই চোখ উপড়ে নেওয়া হয়| পিতলের চেনে বেঁধে সিদিকিয়কে বাবিলে এনে কারারুদ্ধ করা হয়| মৃত্যুর দিন পর্য়ন্ত সিদিকিয় এই কারাগারেই ছিলেন| 12 বাবিলের রাজার বিশেষ রক্ষী ছিল নবূষরদন| রাজা নবূখদ্রিত্সরের শাসনের উনবিংশতি বছরেরপঞ্চম মাসের দশম দিনে নবূষরদন জেরুশালেমে আসেন| 13 প্রভুর উপাসনালয সে পুড়িয়ে দেয়| জেরুশালেমে সমস্ত বাড়িসমূহ এবং রাজপ্রাসাদ নবূষরদনের নির্দেশে পুড়িয়ে ফেলা হয়| 14 বাবিলীয সৈন্যদল জেরুশালেমের চারিদিকের প্রাচীরগুলো ভেঙে দিয়েছিল| এই সেনাদের নেতৃত্বে ছিলেন নবূষরদন| 15 সমস্ত লোকরা যারা জেরুশালেম শহরে বন্দী হয়েছিল, তাদের বাবিল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| তাছাড়া আগেই যারা আত্মসমর্পণ করেছিল তাদেরও বন্দী করে বাবিলে নিয়ে আসে নবূষরদন| দক্ষ কারিগরদেরও সে বাবিলে আনে| 16 কিন্তু নবূষরদন কিছু খুব গরীব লোকেদের ফেলে রেখে যায়| সে তাদের ক্ষেতগুলিতে এবং দ্রাক্ষা ক্ষেগুলিতে কাজ করবার জন্য রেখে যায়| 17 বাবিলের সেনারা উপাসনালযের পিতলের থাম ভেঙে দেয়| তারা প্রভুর উপাসনাগৃহে খুঁটিগুলি ও পিতলের ট্য়াঙ্কও ভেঙে দেয়| সমস্ত পিতলই তারা বাবিলে বয়ে নিয়ে গিয়েছিল| 18 বাবিলের সেনারা উপাসনালযের ব্যবহৃত পিতলের সমস্ত মূল্যবান সামগ্রী লুঠ করে নেয| ধাতুর তৈরি ছোট বড় মাপের পাত্র, বেলচা, মোমবাতিদান তারা নিয়ে যায়| 19 রাজার বিশেষ রক্ষীদের নেতা এই সব জিনিসগুলি লুট করে নিয়ে গিয়েছিল: লুণ্ঠিত সামগ্রীর মধ্যে বেসিন, বাতিদান, আগুনের পাত্র, বড় আকারের পাত্র, পেয নৈবেদ্যর সাজ সরঞ্জাম প্রভৃতি উল্লেখয়োগ্য| সে সোনা ও রূপোর তৈরী সমস্ত জিনিসপত্র লুঠ করেছিল| 20 সে আরো নিয়েছিল: স্তম্ভ দুটি, নীচে 12টি ষাঁড়সহ সমুদ্রটি এবং অস্থাবর খুঁটিগুলি| এগুলো সব রাজা শলোমন তৈরী করেছিলেন| এটাও সে লুঠ করে| পিতলের তৈরী এই সব জিনিসগুলি এত ভারী ছিল য়ে তা ওজন করা য়েত না| 21 স্তম্ভগুলির উচ্চতা ছিল 27ফুট | প্রতিটি স্তম্ভ ছিল 18 ফুট চওড়া ও ফাঁপা| প্রতিটি স্তম্ভের দেওয়াল 4 ইঞ্চি পুরু ছিল| 22 স্তম্ভের ওপরের পিতলের চূড়া ছিল 7 1,2 ফুট উঁচু| ওটা একটি জালের মত নকশা ও পিতলের তৈরী বেদানা দিয়ে সাজানো ছিল| 23 স্তম্ভের দেওয়ালে 96 টি এবং সব মিলিযে মোট 100 টি খোদাই করা বেদানা দেখা য়েত| 24 নবূষরদন ও তারা বিশেষ রক্ষী বাহিনী সরায় এবং সফনিয়কে বন্দী করে| সরায় ছিলেন প্রধান যাজক| সফনিয়র পদ ছিল পরবর্তী উচ্চতম যাজক| উপাসনালযের তিন দ্বাররক্ষীও বন্দী হয়| 25 বিশেষ রক্ষীক্টবাহিনীর প্রধান যুদ্ধরত লোকদের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে বন্দী করল| রাজার সাত উপদেষ্টা বন্দী হয়| 60 জন সাধারণ লোকসহ এক জন লেখক যিনি লোকদের সেনাবিভাগে দেবার ভারপ্রাপ্ত ছিলেন, সবাই বন্দী হয়েছিল| সমস্ত বন্দীদের জেরুশালেম থেকে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| 26 নবূষরদন, সৈন্যাধক্ষ ঐ সমস্ত লোকেদের রিব্লা, যেখানে বাবিলের রাজা ছিলেন সেখানে নিয়ে গেল| 27 বন্দীদের নিয়ে নবূষরদন রিব্লা শহরে আসে| রিব্লা হমাত্ দেশে অবস্থিত| এই শহরেই বাবিলের রাজা অবস্থান করছিলেন| রাজার নির্দেশে সমস্ত বন্দীদের হত্যা করা হয়| একই ভাবে যিহূদা থেকে লোকেদের বন্দী করে এনে হত্যা করা হল|তাই, যিহূদার লোকদের তাদের দেশ থেকে নির্বাসন দেওয়া হল| 28 এই ভাবে নবূখদ্রিত্সর অনেক লোককে বন্দী করেন:নবূখদ্রিত্সরের রাজত্ব কালের সপ্তম বছরে যিহূদা থেকে 3,023 জনকে বন্দী করে আনা হয়েছিল| 29 তাঁর রাজত্ব কালের অষ্টাদশ বছরে জেরুশালেম থেকে নেওয়া বন্দীদের সংখ্যা ছিল 832 জন| 30 রাজা নবূখদ্রিত্সরের ত্রযোবিংশতিতম বছরের রাজত্বের সময় নবূষরদন যিহূদা থেকে 745 জনকে বন্দী করে আনেন|মোট 4,600 মানুষ বন্দী হয়েছিল রাজার এই নির্দেশে| এদের বন্দী করেছিল বিশেষ রক্ষীবাহিনীর নেতা নবূষরদন| 31 যিহূদার রাজা যিহোয়াখীন 37 বছর বাবিলের কারাগারে বন্দী ছিল| যিহোয়াখীনের কারাবাসের সাঁইত্রিশতম বর্ষে বাবিলের রাজা ইবিল মরোদক করুণা করে তাকে মুক্তি দেন| তিনি দ্বাদশ মাসের 25তম দিনে যিহোয়াখীনকে মুক্তি দেন| ইবিল ঐ বছরেই বাবিলের রাজা হয়েছিল| 32 রাজা ইবিল-মরোদক যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের প্রতি দযাপরবশ হয়ে ভাল ব্যবহার করেন| অন্য রাজারা যারা তাঁর সঙ্গে বাবিলে ছিল, তাদের তুলনায় যিহোয়াখীনকে উচ্চতর পদে সম্মানিত করেছিলেন| 33 যিহোয়াখীন তার কারা-বস্ত্র খুলে ফেলেছিল এবং তাকে নতুন পোশাক দেওয়া হয়েছিল| শুধু তাই নয় সে জীবনের বাকী সময় রাজার টেবিলে বসে খাওয়া দাওযা করেছিল| 34 বাবিলের রাজা প্রতিদিন যিহোয়াখীনকে অনুদান দিত| এই অনুদান যিহোয়াখীনের মৃত্যুর আগে পর্য়ন্ত চালু ছিল|
1 হায় জেরুশালেম! এক কালে সে ছিল লোকে পরিপূর্ণ| কিন্তু বর্তমানে শহরটি ভীষণ জনশূন্য! জেরুশালেম একদা বিশ্বের সেরা শহর ছিল| কিন্তু এখন তার রূপ বিধ্বা মহিলার মতো| একসময় সেছিল অনেক শহরের মধ্যে রাণীর মতো| কিন্তু এখন সে দাসে পরিণত| 2 রাতে করুণ সুরে কাঁদে জেরুশালেম| তার গাল বেয়ে অশ্রুধারা নামে| সান্ত্বনা দেওয়ার মতো তার কেউ নেই| অনেক প্রেমিক তার প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন ছিল| কিন্তু এখন তাকে সান্ত্বনা দেবার কেউ নেই| তার সব বন্ধুরাই তাকে প্রতারণা করেছে| বন্ধুরা এখন তার শএুতে পরিণত হয়েছে| 3 যিহূদা ভীষণ রকমের শাস্তি ও যন্ত্রনা পেয়েছিল এবং তারপর যিহূদাকে বন্দী করা হয়| যিহূদা অন্য দেশে বাস করছে| কিন্তু সে বিশ্রাম পাচ্ছে না| লোকরা তাকে তাড়া করছে| তাকে তারা সঙ্কীর্ণ উপত্যকাগুলির ওপর তাড়া করছে এবং তাকে ধরে ফেলছে| 4 সিয়োনে যাবার পথঘাটগুলি শোকাহত| কারণ উত্সব পালন করতে কেউ সিয়োনে আসছে না| সিয়োনের প্রবেশ দ্বারগুলি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| যাজকরা সেখানে গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলছে| সিয়োনের যুবতী মেয়েরা হতবাক| মোট কথা সে দুঃখে ভারাএান্ত| 5 জেরুশালেমের শএুরা জয়ী হয়েছে| তার শএুরা এখন নিয়ন্ত্রনাধীন| তার বিপক্ষীরা আরামে বাস করে| এটা ঘটেছে কারণ বহু পাপের জন্যই প্রভু থাকে শাস্তি দিয়েছেন| তাঁর সন্তানরা চলে গিয়েছেন, শএুরা তাদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছেন| 6 সিয়োনের লোকদের সৌন্দর্য় আর নেই| তার নেতারা হরিণের মতো| শক্তি না থাকলেও তারা ছুটে পালাচ্ছে| কারণ অনেকেই তাদের ধরার জন্য তাড়া করছে| 7 পুরানো দিনের কথা জেরুশালেম ভাবছে| ভাবছে সেই সময়ের কথা যখন সে যন্ত্রণা ভোগ করছিল এবং ছড়িয়ে পড়েছিল| তার সমস্ত মূল্যবান জিনিষ হারানোর কথা| পুরানো দিনের উল্লেখয়োগ্য মধুর ঘটনার কথা| শএুদের হাতে নিজের লোকদের বন্দী হওয়ার কথাও সে স্মরণ করছে| ধ্বংসের সময় শএুরা তাকে দেখে উপহাস করেছিল| সে সময় তাকে সাহায্য করার কেউ ছিল না| 8 জেরুশালেম দারুণ পাপ কাজ করেছে| আর এই পাপের জন্যই সে এখন অশুদ্ধ| অতীতে লোকরা তাকে সম্মান করত কিন্তু এখন সেই সব লোকরাই তাকে ঘৃণা করে কারণ সে সম্মান হারিযেছে| এমন কি সে যন্ত্রণায় বিলাপ করে এবং দীর্ঘশ্বাস ফেলে এবং নিজের দিক থেকেই মুখ ফিরিয়ে নেয| 9 তার অপরিচ্ছন্নতা, তার পোষাককে নোংরা করেছে| এমন যে হতে পারে তা সে কখনও ভাবতেও পারেনি| তার পতন বিস্মযকর| তাকে সান্ত্বনা দেবার মতো কেউ নেই| সে বলে, “হে প্রভু, দেখো আমি কি ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত! দেখো আমার শএুরা নিজেদের কত বড় বলে মনে করে!” 10 শএুরা তার হাত ধরে টানছে| শএুরা তার সুন্দর জিনিসগুলি ছিনিয়ে নিয়েছে| বিদেশী জাতির লোকরা তার উপাসনালযে ঢুকে পড়েছে| অথচ প্রভু আপনি বলেছিলেন, আমাদের সমাজে যোগ দিতে পারবেন না! 11 জেরুশালেমের সমস্ত জনগণ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে| প্রত্যেকেই খাদ্যের সন্ধানে ক্ষিপ্ত| খাদ্যের জন্য তারা তাদের সমস্ত মূল্যবান বস্তু দিয়ে দিচ্ছে| শুধুমাত্র বাঁচার জন্যই তারা এটা করছে| জেরুশালেম বলছে, “হে প্রভু, আমার দিকে তাকান! দেখুন লোকরা আমায় কত ঘৃণা করে!” 12 তোমরা যারা পাশ দিয়ে যাচ্ছ মনে হচ্ছে, তাদের কাছে কিছুই নয়| কিন্তু আমার দিকে তাকিযে দেখ, আমার যন্ত্রণার মতো কি কোন যন্ত্রণা আছে? আমার যে দুর্দশা হয়েছে এমন দুর্দশা কি আর আছে? প্রভু আমায় যে শাস্তি দিয়েছেন সেই শাস্তির যন্ত্রণার মতো কি কোন যন্ত্রণা আছে? তিনি তাঁর ভয়ঙ্কর রোধর দিনে আমাকে শাস্তি দিয়েছেন| 13 প্রভু ওপর থেকে আগুন পাঠালেন| ওই আগুন আমার হাড় ভেদ করে চলে গেল| তিনি আমার চলার পথে একটি জাল বিছিযে দিয়ে পথের চারিদিকে আমাকে ঘোরালেন| তিনি আমাকে পরিত্যক্ত দেশে রূপান্তরিত করলেন| আমি সারাদিন অসুস্থ| 14 “তিনি আমার পাপগুলো একটা য়োযালের মত তাঁর হাত দিয়ে বেঁধে দিয়েছেন| তিনি আমাকে দুর্বল করে দিয়েছেন| তিনি আমাকে এমন লোকের হাতে সমর্পন করেছেন, যাদের বিরুদ্ধে আমি দাঁড়াতে পারি না|” 15 “প্রভু আমার অধীনস্থ সমস্ত শক্তিশালী সৈন্যদের সরিয়ে দিয়েছেন| ঐসব সৈন্যরা শহরের মধ্যে ছিল| তারপর প্রভু একটি উত্সব করলেন| আমার যুবক সৈন্যদের হত্যা করার জন্য তিনি ঐসব তীর্থ যাত্রীদের পাঠালেন| দ্রাক্ষারস তৈরীর জন্য যেমন একজন দ্রাক্ষা দলিত করে তেমনিভাবে প্রভু যিহূদার লোকদের পিষে ফেলেছেন| এই দ্রাক্ষা পেষাইযের জায়গা হল জেরুশালেমের কুমারী কন্যা (জেরুশালেম শহর|)” 16 “আমি এ সবের জন্য কাঁদলাম| আমার দুচোখ বয়ে অঝোরে জল গড়াতে থাকলো| আমাকে শান্তি দেওয়ার, সান্ত্বনা দেওয়ার কেউ ছিল না| এমন কেউ ছিল না যে আমাকে একটু স্বস্তি দিতে পারত| শএুরা জয়লাভ করায় আমার সন্তানগণ পরিত্যক্ত ভূমির মতো হয়ে উঠলো|” 17 সিয়োন তার দুহাত বাড়িয়ে দিল কিন্তু তাকে সান্ত্বনা দেবার কেউ ছিল না| প্রভু যাকোবের শএুদের শহর ঘিরে ফেলার আদেশ দিলেন| জেরুশালেম শএুদের কাছে একটি অশুদ্ধ স্ত্রীলোক হয়ে পড়েছে| 18 সে বলল, “আমি প্রভুর কথা শুনতে অস্বীকার করেছিলাম| তাই প্রভুর অধিকার আছে আমাকে এমন শাস্তি দেওয়ার| তাই জনগণ, তোমরা শোন! আমার দুর্ভোগের দিকে তাকাও! আমার যুবক যুবতীদের নির্বাসনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে| 19 আমাকে যারা ভালোবাসতো তাদের আমি ডাকলাম| কিন্তু ওরা আমায় ঠকালো| আমার যাজকগণ ও প্রবীণ ব্যক্তিরা এই শহরে মারা গেছে| আমার যাজকগণ ও নেতারা যখন বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের সন্ধান করছিল তখন তারা এই শহরে মারা যায়| 20 “হে প্রভু, আমার দিকে তাকিযে দেখুন! আমি দুর্দশাগ্রস্ত! আমি অন্তর থেকে বিপর্য়স্ত| আমার মনে হচ্ছে যে আমার ভেতরে হৃদয়টা উল্টো হয়ে রয়েছে! আমার এমন খারাপ লাগছে! রাস্তায়, আমার ছেলেমেয়েদের তরবারি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে| মৃত্যুর পচা গন্ধ সর্বত্র ছড়িয়ে আছে! 21 “আমার বিলাপ শুনুন! আমাকে সান্তনা দেবার কেউ নেই| আমার সমস্ত শএুরা আমার দুর্দশা সম্পর্কে শুনেছে| তারা খুশী যে আপনি আমাকে এমন করেছেন| আপনি বলেছিলেন যে শাস্তির একটা সময় থাকবে| আপনি বলেছিলেন যে আপনি আমার শএুদের শাস্তি দেবেন| এখন আপনি যে সবগুলো বলেছিলেন সেগুলো করুন| 22 “আমার শএুদের নিষ্ঠুরতার দিকে তাকিযে দেখুন| তাহলে আমার জন্য আমার সঙ্গে আপনি যে রকম ব্যবহার করেছেন সে রকম ওদের সঙ্গেও করতে পারবেন| এরকম করুন কারণ আমি এমাগতই বিলাপ করে যাচ্ছি| এটা করুন কারণ আমার হৃদয় অসুস্থ|”
1 দেখ, প্রভু সিয়োনের লোকেদের কেমন করে বাতিল করেছেন| তিনি ইস্রায়েলের মহিমাকে আকাশ থেকে মাটিতে নিক্ষেপ করেছেন| তাঁর রোধর দিনে প্রভু তাঁর পাদানি অর্থাত্ মন্দিরের কথা পর্য়ন্ত মনে রাখেননি| 2 প্রভু যাকোবের গোচারণ ভূমিগুলি ধ্বংস করেছেন| তিনি সেগুলিকে নির্মম ভাবে ধ্বংস করেছেন| রোধর বশে তিনি যিহূদার দূর্গগুলি ধ্বংস করেছেন| প্রভু যিহূদা রাজ্য এবং তার শাসকবর্গকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলেছেন| তিনি যিহূদা রাজ্যকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছেন| 3 প্রভু রুদ্ধ হয়েছিলেন এবং তিনি ইস্রায়েলের সব শক্তি চূর্ণ করেছিলেন| ইস্রায়েলের ওপর থেকে তিনি তাঁর দক্ষিণ হস্ত সরিয়ে নিয়েছিলেন| তিনি এটা করেছিলেন যখন শএুরা এসেছিল| যাকোবে তিনি লেলিহান আগুনের মত জ্বলেছিলেন| তিনি ছিলেন একটি আগুনের মত যা চতুর্দিক পুড়িয়ে দেয়| 4 একজন শএুর মত প্রভু তাঁর ধনুক বেঁকিয়ে দিয়েছিলেন| তিনি তাঁর দক্ষিণ হস্তে নিয়েছিলেন একটি তরবারি| তিনি যিহূদার সমস্ত সুদর্শন লোকদের হত্যা করেছিলেন| প্রভু তাঁদের হত্যা করলেন যেন তিনি তাদের শএু| প্রভু তাঁর রোধ অগ্নির মত সিয়োনের গৃহগুলির উপর বর্ষণ করলেন| 5 প্রভু একজন শএুর মত হয়ে উঠেছেন| তিনি ইস্রায়েলকে গিলে ফেলেছেন| তিনি তার সব প্রাসাদগুলি গিলে ফেলেছেন| তিনি তার সব দুর্গগুলি গ্রাস করেছেন| যিহূদার কন্যাতে (ইস্রায়েলে) তিনি প্রভূত দুঃখ এবং মৃতের জন্য অশ্রুপাত ঘটিযেছিলেন| 6 প্রভু নিজের তাঁবুটিকে একটি বাগানের মতো উপড়ে ফেলেছিলেন| তাঁকে উপাসনা করার জন্য লোকে যে স্থানে গিয়ে জড়ো হত তিনি সেই স্থানটিও নষ্ট করে দিয়েছিলেন| সিয়োনে প্রভু লোকদের বিশেষ সভাগুলির কথা এবং বিশেষ বিশ্রামের দিনগুলি ভুলিযে দিয়েছিলেন| প্রভু রাজা এবং যাজকদের বাতিল করে দিয়েছিলেন| তিনি রুদ্ধ হয়েছিলেন এবং তাদের বাতিল করেছিলেন| 7 প্রভু তাঁর বেদীটি বাতিল করেছিলেন| তিনি তাঁর উপাসনার পবিত্র স্থানটি বাতিল করেছিলেন| জেরুশালেমের প্রাসাদের দেওয়ালগুলি তিনি শএুদের ভূমিসাত্ করতে দিয়েছিলেন| প্রভুর মন্দিরে শএুরা আনন্দে চিত্কার করছিল যেন সেটা ছিল কোন এক ছুটির দিন| 8 সিয়োনের লোকদের চারপাশে যে দেওয়াল ছিল সেটা প্রভু ধ্বংস করবার পরিকল্পনা করেছিলেন| দেওয়ালটি কোথা থেকে ভাঙ্গতে হবে তা বোঝানোর জন্য তিনি দেওয়ালে একটি মাপের দাগ কেটে ছিলেন| তিনি নিজেকে ধ্বংসকার্য় থেকে বিরত করেননি| সব দেওয়ালগুলিকে তিনি দুঃখে কাঁদিয়ে ছিলেন| সবগুলো একই সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল| 9 জেরুশালেমের ফটকগুলি মাটিতে ডুবে গিয়েছিল| তিনি ফটকের স্তম্ভগুলি ধ্বংস করে চূর্ণ করেছিলেন| তার রাজা এবং রাজপুত্ররা অন্য জাতির মধ্যে রয়েছে তাদের জন্য আর কোন শিক্ষা নেই| জেরুশালেমের ভাব্বাদীরাও প্রভুর কাছ থেকে আর কোন দিব্য দৃষ্টি পায় নি| 10 সিয়োনের বয়োবৃদ্ধরা মাটিতে বসেন তাঁরা শান্ত হয়ে মাটিতে বসে থাকেন| তাঁরা তাঁদের মাথায় ধূলো ছড়ান তারা চটের বস্ত্র পরেন| জেরুশালেমের যুবতী নারীরা দুঃখে তাঁদের মাথা আভূমি নত করেন| 11 আমার চোখ কেঁদে কেঁদে ক্লান্ত, আমার অন্তর বিচলিত| মনে হচ্ছে যেন আমার হৃদয়কে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে| আমার লোকরা ধ্বংস হয়েছে বলেই আমার এমন মনে হচ্ছে| ছেলেমেয়েরা এবং শিশুরা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে| শহরের প্রকাশ্য চৌপাটিতে তারা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে| 12 সেই বালক-বালিকারা তাদের মায়েদের বলে, “কোথায় আছে রুটি আর দ্রাক্ষারস?” তারা মরে যেতে যেতে এই প্রশ্ন করে তারা তাদের মায়ের কোলে মারা যায়| 13 জেরুশালেমের জনগণ, আমি কাদের সঙ্গে তোমাদের তুলনা করব? সিয়োনের জনগণ, আমি কিসের সঙ্গে তোমাদের তুলনা করব? আমি কেমন করে তোমায় স্বাচ্ছন্দ্য দেব? তোমার ধ্বংস সমুদ্রের মতো বিশাল মনে হয় না কেউ তোমায় সারিয়ে তুলতে পারবে! 14 তোমার জন্য তোমার ভাব্বাদীদের দিব্যদর্শন হয়েছিল| কিন্তু তাদের দিব্যদর্শনগুলি ছিল একেবারেই মূল্যহীন ও মিথ্যা| তারা তোমার পাপের বিরুদ্ধে প্রচার করেনি, তারা অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করেনি, তারা তোমার জন্য বার্তা প্রচার করেছিল কিন্তু সেগুলি ছিল মিথ্যা বার্তা যা তোমাকে বোকা বানিয়েছিল| 15 যেসব লোকরা রাস্তা দিয়ে যায় তারা তোমায় দেখে বিস্মযে অভিভূত এবং জেরুশালেমের লোকদের প্রতি হাততালি দেয়| জেরুশালেমের কন্যার প্রতি তারা শিস্ দেয় আর মাথা নাড়ে| তারা প্রশ্ন করে, “এই কি সেই শহর যাকে লোকে বলত ‘নিখুঁত সুন্দর শহর’ এবং ‘সারা পৃথিবীর আনন্দ’?” 16 তোমার সব শএুরা তোমায় পরিহাস করে তারা তোমার প্রতি শিস্ দেয় ও দাঁত কিড়মিড় করে| তারা বলে, “আমরা তাদের গিলে খেয়েছি! আজ সত্যিই সেই দিন এসেছে যে দিনের জন্য আমরা অপেক্ষা করেছিলাম| অবশেষে আমরা এটি ঘটতে দেখলাম|” 17 প্রভু যা পরিকল্পনা করেছিলেন তাই করেছেন| তিনি যা করবেন বলেছিলেন তাই করেছেন| বহু পূর্ব থেকে তিনি যা আদেশ দিয়েছিলেন তাই করেছেন| তিনি ধ্বংস করেছিলেন এবং তাঁর কোন দয়া ছিল না| তোমার প্রতি যা ঘটেছিল তার দ্বারা তিনি তোমার শএুদের সুখী করেছিলেন| তিনি তোমার শএুদের শক্তিশালী করেছিলেন| 18 তুমি তোমার হৃদয় দিয়ে প্রভুর কাছে কেঁদে বল, “হে সিয়োন কন্যার দেওয়াল, নদীর মত অশ্রু গড়িযে পড়ুক! দিনে এবং রাতে তোমার অশ্রু বয়ে যাক্ | তুমি থেমো না! তোমার চোখকে স্থির থাকতে দিও না!” 19 ওঠ! রাত্রে চিত্কার করে কাঁদ| রাত্রের প্রতিটি প্রহরের শুরুতে চিত্কার করে কাঁদ! তোমার হৃদয়কে জলের মত ঢেলে দাও! প্রভুর সামনে তোমার হৃদয়কে ঢেলে দাও! প্রভুর কাছে প্রার্থনায তোমার হাত তুলে ধর| তাঁকে বল তোমার ছেলেমেয়েদের যেন বাঁচিয়ে রাখেন| তাঁকে বল তোমার যে ছেলেমেয়েরা উপবাসে মূর্ছা যাচ্ছে তাদের যেন তিনি বাঁচিয়ে রাখেন| শহরের রাস্তায় রাস্তায় তারা উপবাসে মূর্ছা যাচ্ছে| 20 হে প্রভু, আমার দিকে তাকান! আমার দিকে দেখুন যার সঙ্গে আপনি এভাবে আচরণ করেছেন! আমাকে এই প্রশ্নটি করতে দিন: নারীদের কি সেই সন্তানদের খাওয়া উচিত্ যাদের তারা জন্ম দিয়েছে? যাদের তারা আদর-যত্ন করেছে সেই ছেলেমেয়েদের কি নারীরা ভক্ষণ করবে? প্রভুর মন্দিরে কি যাজক এবং ভাব্বাদীরা নিহত হবেন? 21 যুবকরা এবং বৃদ্ধরা শহরের রাস্তার মাটিতে পড়ে আছে| আমার যুবতী নারীরা এবং যুবকরা তরবারির আঘাতে নিহত| প্রভু, আপনার রোধর দিনে আপনি তাদের হত্যা করেছিলেন, আপনি তাদের হত্যা করেছিলেন ক্ষমাহীন ভাবে! 22 আপনি চারদিক থেকে সন্ত্রাসকে ডেকে এনেছিলেন| আমার কাছে আসার জন্য আপনি সন্ত্রাসকে আমন্ত্রণ করেছিলেন যেন সে একটি ছুটির দিন| প্রভুর রোধর সেই দিনে কোন ব্যক্তিই রেহাই পাই নি| যাদের আমি জন্ম দিয়েছি এবং লালন-পালন করেছি তাদের আমার শএুরা হত্যা করেছে|
1 আমি সেই মানুষ যে অনেক দুঃখ কষ্ট দেখেছে| আমি তাকে দেখেছি যে আমাদের লাঠি দিয়ে মেরেছিল! 2 প্রভু আমাকে আলোয নয় অন্ধকারে নিয়ে এলেন| 3 প্রভু আমাকে সারা দিন ধরে তাঁর হাত দিয়ে মারধোর করেছেন| তিনি আমাকে বারবার মারলেন| 4 তিনি আমার চামড়া ও মাংস ছিঁড়ে ফেললেন| তিনি হাড়গোড় ভেঙ্গে দিলেন| 5 প্রভু আমার বিরুদ্ধে তিক্ততা ও সমস্যার পাহাড় তৈরী করলেন| তিনি আমার চারি দিকে তিক্ততার সমস্যাকে আনলেন| 6 যারা দীর্ঘসময় থেকে মৃত তাদের মতো তিনি আমাকে অন্ধকারে বসিযে রাখলেন| 7 তিনি আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখলেন| তাই আমি বেরোতে পারলাম না| ভারী চেন দিয়ে তিনি আমাকে বেঁধে রাখলেন| 8 এমনকি যখন আমি সাহায্যের জন্য চিত্কার করে কাঁদলাম প্রভু আমার সেই প্রার্থনায কর্ণপাত করেন নি| 9 তিনি ভাঙ্গা পাথর দিয়ে আমার বেরোনোর পথ বন্ধ করে দিয়েছেন| তিনি ঐ পথকে অাঁকাবাঁকা করে দিয়েছেন| 10 প্রভু যেন আমাকে আক্রমণ করতে উদ্যত এক ভাল্লুক| তিনি যেন গুহায লুকিয়ে থাকা এক সিংহ| 11 প্রভু আমাকে আমার পথের বাইরে চালনা করলেন| তিনি আমাকে খণ্ড খণ্ড করে ছিঁড়ে ধ্বংস করলেন| 12 তিনি তাঁর ধনুক প্রস্তুত করে রাখলেন| আমি তাঁর তীরের লক্ষ্য বস্তু হলাম| 13 আমার পাকস্থলীতে তিনি আঘাত করলেন| তিনি তাঁর তূনীর থেকে একটি তীর ব্যবহার করে আমাকে বিদ্ধ করলেন| 14 লোকের কাছে আজ আমি উপহাসের পাত্র| সারাদিন ধরে আমার সম্পর্কে গান গেযে গেযে তারা আমায় উপহাস করে| 15 এই বিষ (শাস্তি) প্রভুই আমায় পান করতে দিয়েছেন| তিনি এই তিক্ত পানীয় দিয়ে আমায় পূর্ণ করেছেন| 16 তিনি আমায় কাঁকর খেতে বাধ্য করলেন| তিনি আমায় নোংরায় ফেলে দিলেন| 17 আমি ভাবলাম আর কখনও শান্তি পাবো না| সমস্ত ভালো জিনিসের ভাবনা ভুললাম| 18 নিজে নিজে বললাম, “প্রভুর সাহায্যের প্রত্যাশা আর নেই|” 19 আমার যন্ত্রণা এবং আমার উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়ানো মনে রাখবেন| যে শাস্তি আপনি আমায় দিয়েছিলেন তা মনে রাখবেন| 20 সব দুঃখ কষ্টের কথা আমার ভালো ভাবেই মনে আছে এবং আমি খুবই বিষন্ন| 21 কিন্তু ঠিক তক্ষুনি, আমি অন্য কিছু ভাবি| যখন আমি এরকম করে ভাবি, আমি কিছু আশা দেখতে পাই| আমার ভাবনাগুলি হল এইরকম: 22 প্রভুর করুণা ও ভালোবাসা অসীম| তাঁর দয়ার কোন শেষ নেই| 23 প্রতিটি প্রভাতে নতুন নতুন ভাবে আপনি এটা প্রদর্শন করেন! আপনি খুব নির্ভরয়োগ্য এবং বিশ্বস্ত! 24 আমি মনে মনে বললাম, “আমি যা চাই তা হল, প্রভু| তাঁর ওপর আমার আস্থা আছে|” 25 যে সব লোকরা প্রভুর জন্য অপেক্ষা করে, প্রভু তাদের প্রতি সদয হন| প্রভুর কাছে যারা সাহায্য চায় তাদের প্রতি প্রভু সদয| 26 নিজেকে রক্ষা করবার সব চেয়ে ভাল উপায় হল শান্ত ভাবে প্রভুর অপেক্ষায থাকা| 27 কোন ব্যক্তির পক্ষে ছোট বেলা থেকেই য়োযাল বহন করা ভালো| 28 প্রভু যখন তাঁর য়োযাল বা বাঁক কোন ব্যক্তির ওপর রাখেন তখন শান্ত ভাবে একাকী তার বসে থাকা উচিত| 29 উদ্ধার পাবার আশায় তাকে তার মুখ আভূমি নত করতে হবে| 30 ওই লোকটির গাল বাড়িয়ে চড় খাওয়া উচিত| ওই ব্যক্তির উচিত অন্যদের তাকে অপমান করতে দেওয়া| 31 ওই ব্যক্তির মনে রাখা উচিত যে প্রভু কাউকেই চির কালের জন্য পরিত্যাগ করেন না| 32 প্রভু যখন শাস্তি দেন তখন তিনি ক্ষমাও করেন| এই ক্ষমা তাঁর গভীরে ভালবাসা আর করুণা থেকেই আসে| 33 প্রভু কাউকে শাস্তি দিতে চান না| লোকরা অশান্তিতে থাকুক এটাও তিনি চান না| 34 প্রভু এইগুলি পছন্দ করেন না: তিনি দেশের সব বন্দীদের তাঁর পায়ের তলায় পিষে ফেলতে চান না| তিনি কাউকে পেষণ করতে চান না| 35 এক জন অন্যের প্রতি অন্যায় করুক এটা তিনি কখনও চান না| কিন্তু কিছু মানুষ সব সময়ই পরাত্পরের সামনে এরকম কাজ করে| 36 এক জন ব্যক্তি আর এক জনকে আদালতে প্রতারণা করুক এটা প্রভু একেবারে পছন্দ করেন না| 37 কোন লোকেরই কিছু বলা এবং সেটা ঘটানো উচিত নয় যতক্ষণ না প্রভু তা ঘটানোর আদেশ দেন| 38 পরাত্পর ভালো ও মন্দ দুইই ঘটাতে আজ্ঞা দেন| 39 যখন কাউকে পাপের জন্য প্রভু শাস্তি দেন, তখন সে জীবিত অবস্থায় অভিযোগ জানাতে পারে না| 40 এসো, আমরা কি করেছি তা সতর্কভাবে পরীক্ষা করি| তারপর আমরা প্রভুতে আশ্রয় নেব| 41 স্বর্গের ঈশ্বরের প্রতি হৃদয় এবং আমাদের হাত উত্তোলন করা উচিত্| 42 এসো তাঁর উদ্দেশ্যে বলি, “আমরা পাপ করেছি এবং আমরা অবাধ্য হয়েছিলাম| আপনি আমাদের ক্ষমা করেননি|” 43 আপনি আমাদের রোধ দিয়ে মুড়ে দিয়েছেন এবং আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন| কোন রকম ক্ষমা না করেই হত্যা করেছেন! 44 মেঘের আচরণে আপনি নিজেকে ঢেকেছেন| এর কারণ, যাতে কোন প্রার্থনাই মেঘের মধ্যে দিয়ে যেতে না পারে| 45 অন্য জাতিদের কাছে আপনি আমাদের আবর্জনা ও ময়লার মতো সৃষ্টি করেছেন| 46 আমাদের সমস্ত শএুরা আমাদের ঠাট্টা করেছে| 47 আমরা ভয় পেয়েছি| গভীর গর্তে পড়ে আমরা দারুণ আঘাত পেয়েছি| আমাদের সব কিছু ভেঙ্গেছে| 48 আমার চোখ বেয়ে জলের স্রোত নেমেছে! আমি আমার লোকদের ধ্বংসের জন্য কেঁদেছি! 49 যতক্ষণ পর্য়ন্ত না প্রভু স্বর্গ থেকে নীচে দেখেন ততক্ষণ অবিশ্রান্ত ভাবে আমার চোখের জল বয়ে যাবে! 50 51 আমার দুটি চোখ আমায় বিমর্ষ করে তোলে যখন আমি আমার শহরের ছোট ছোট মেয়েদের দুর্দশা দেখি| 52 ওই মানুষগুলো অকারণে আমার শএু| আমার শএুরা আমাকে বিনা কারণে পাখির মতো শিকার করেছে| 53 তারা আমায় গভীর গর্তে নিক্ষেপ করেছে| আমি জীবিত আছি জেনেও আমার দিকে পাথর ছুঁড়ছে| 54 জল আমার মাথা ছাপিযে গেল| আমি মনে মনে বললাম, “আমি শেষ|” 55 প্রভু, আমি গর্তের তলা থেকে আপনাকে ডেকেছি| আপনার নাম ধরে চিত্কার করে ডেকেছি| 56 আমার কণ্ঠস্বর শুনুন| আপনার কান বন্ধ করে রাখবেন না| আমাকে উদ্ধার করতে অস্বীকার করবেন না| 57 আমি যখন আপনার কাছে মিনতি করব তখন আমার কাছে আসবেন! আমাকে বলবেন, “ভয় পেও না|” 58 প্রভু আমার আবেদনটা বিচার করুন| আমাকে আমার জীবন ফিরিয়ে দিন| 59 প্রভু, আমার দুর্দশা দেখুন| আমায় ন্যায় পেতে সাহায্য করুন| 60 আমার শএুরা কি ভাবে আমাকে আঘাত করেছে তা দেখুন| আমার বিরুদ্ধে ওদের সমস্ত শযতানি পরিকল্পনাগুলি সম্পর্কে আপনি অবহিত| 61 প্রভু, ওরা কি ভাবে আমাকে অপমান করেছে তা শুনুন| আমার বিরুদ্ধে ওদের সমস্ত শযতানি পরিকল্পনার কথা শুনুন| 62 শএুদের কথা এবং তাদের সমস্ত পরিকল্পনা সব সময়ই আমার বিরুদ্ধে| 63 যখন ওরা বসে কিংবা দাঁড়ায তখনও আমায় নিয়ে ওরা কি ভাবে মজা করে তাও দেখুন, প্রভু! 64 প্রভু, ওরা যা করেছে তার জন্য ওদের প্রাপ্য শাস্তি দিন! 65 ওদের হৃদয়কে অনমনীয করে দিন! তারপর আপনার অভিশাপ ওদের উপর বর্ষণ করুন! 66 রোধ তাদের তাড়া করুন! আপনার আকাশের নীচে তাদের ধ্বংস করুন প্রভু!
1 দেখো, সোনা কি ভাবে কৃঞ্চবর্ণ হয়েছে| দেখো, দামী সোনার কি পরিবর্তন| চারি দিকেই মন্দিরের পাথরগুলো ইতস্ততঃ ছড়িয়ে আছে| তাদের রাস্তার প্রতিটি কোণে বিক্ষিপ্ত করা হয়েছে| 2 সিয়োনের লোকরা খুব মূল্যবান ছিল| তারা একসময় সোনার মতোই মূল্যবান ছিল| শএুরা তাদের কুমোরদের তৈরী মাটির পাত্রের মত ব্যবহার করে| 3 এমনকি শিয়ালও তার শাবকদের স্তন পান করায়| কিন্তু আমার লোকরা খুব নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে| তারা মরুভূমিতে থাকা উট পাখীর মতো| 4 তৃষ্ণায ছোট্ট শিশুর জিভটা মুখে আটকে পড়েছে| ছেলেমেয়েরা খাবার চাইছে| কিন্তু কেউই তাদের খাবার দেয় না| 5 এক সময় যারা খুব দামী দামী খাবার খেয়েছে, এখন তারাই খিদের জ্বালায় রাস্তায় মরছে| সুন্দর লাল পোশাক পরে যারা এমশঃ বড় হয়েছে, তারাই এখন খাদ্যের সন্ধানে আবর্জনার স্তুপ ঘেঁটে ফিরছে| 6 তাদের পাপ কার্য়্য়ের জন্য আমার লোকদের শাস্তি সদোমের পাপের কারণে শাস্তির চেয়েও বড় হয় গেছে| সদোম ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল কারণ ঐ জায়গায় লোকরা পাপী হয়ে উঠেছিল| সদোমকে হঠাত্ ধ্বংস করা হয়েছিল| কোন মানুষ ঐ ধ্বংস কার্য়্য় ঘটাযনি| 7 সিয়োনের নেতারা বরফের চেয়েও পরিষ্কার ছিল| দুধের থেকেও সাদা| প্রবালের মত ছিল তাদের গায়ের রঙ| তাদের দাড়ি ছিল নীলকান্ত মণির মতো| 8 কিন্তু এখন তাদের মুখ ঝুলের থেকেও কালো| রাস্তায় বের হলে কেউ তাদের চিনতে পর্য়ন্ত পারে না| তাদের চামড়াগুলি হাড়ের ওপর ঝুলছে এবং কাঠের মত শুকিয়ে গেছে| 9 দুর্ভিক্ষে মরার চেয়ে তরবারির আঘাতে মরা ভাল| অনাহারে থাকা জনগণ ভীষণ অবসন্ন| তারা আহত| শস্যক্ষেত্র থেকে তারা কোন ফসল পায় নি তাই খাদ্যের অভাবে তারা মারা গিয়েছে| 10 এমনকি, সমস্ত সুন্দরী মায়েরা তাদের সন্তানদেরই খাদ্যের মতো রান্না করেছে| ওই শিশুগুলি তাদের মায়েদের খাদ্য হয়ে উঠেছিল| আমার লোকদের ধ্বংসের সময় এটা ঘটেছিল| 11 প্রভু, তাঁর সমস্ত রোধ ব্যবহার করেছেন| তিনি এোধর আগুন সিয়োনে নিক্ষেপ করেছেন| ওই আগুন সিয়োনকে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে| 12 পৃথিবীর রাজারা এই ঘটনার কথা বিশ্বাস করতে পারেন নি| যা ঘটেছিল বিশ্বের মানুষরা তা বিশ্বাস করতে পারে নি| তারা বিশ্বাস করতে পারেনি যে জেরুশালেম শহরের প্রধান ফটক দিয়ে শএুরা ঢুকতে সক্ষম হবে| 13 কিন্তু এটাই ঘটেছে কারণ জেরুশালেমের ভাব্বাদীরা পাপ কাজ করেছে| এটা ঘটেছে কারণ জেরুশালেমের যাজকরা পাপ কাজ করেছে| ঐসব লোকরা জেরুশালেম শহরে ভাল মানুষদের হত্যা করেছে| 14 তারা অন্ধের মত শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছে| রক্তপাতে তারা নোংরা হয়েছে| তারা এতো নোংরা ছিল যে তাদের জামাকাপড়ও কেউ স্পর্শ করে নি| 15 চলে যাও! তোমরা অশুচি| লোকরা চিত্কার করে বলছিল, “দূর হয়ে যাও! দূর হয়ে যাও! আমাদের স্পর্শ কোরো না|” ঐ লোকরা এদিক ওদিক ঘুরে বেড়িযেছে কিন্তু কোন ঘরেই আশ্রয় পায়নি| অন্য দেশের লোকরা বলেছে, “আমরা ওদের বাঁচতে দিতে চাই না|” 16 প্রভু বয়ং ওদের ধ্বংস করেছেন| তিনি ওদের আর দেখাশোনা করতে পারছিলেন না| তিনি যাজকদের শ্রদ্ধা করতে পারেন নি| তিনি যিহূদার বযস্ক মানুষদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন ছিলেন না| 17 সাহায্য চেয়ে চেয়ে আমরা চোখ নষ্ট করে ফেলেছি| কিন্তু কোন সাহায্য আসে নি| আমরা একটা জাতির খোঁজ করেছিলাম যারা আমাদের রক্ষা করতে পারবে| আমরা আমাদের পর্য়বেক্ষণ কেন্দ্র থেকে নজর রেখেছিলাম কিন্তু কোন জাতিই আমাদের রক্ষা করতে আসেনি| 18 শএুরা সবসময় আমাদের খুঁজে ফিরেছে| আমরা পথেঘাটে বেরোতে পর্য়ন্ত পারিনি| আমাদের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছিল| আমাদের সময় ফুরিযে গিয়ে শেষ সময় ঘনিয়ে এল| 19 যে মানুষটা আমাদের তাড়া করেছিল তার গতিবেগ আকাশে উড়তে থাকা ঈগলের থেকেও বেশী| ওই লোকগুলো আমাদের ধরবার জন্য পাহাড়ে তাড়া করেছিল এবং আমাদের হঠাত্ আক্রমণ করবার জন্য মরুভূমিতে লুকিয়ে থেকেছিল| 20 রাজা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন| তিনি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন| কিন্তু সেই প্রিয রাজাকেও ওরা ফাঁদে ফেলল| রাজাকে প্রভুই ফাঁদে অভিষিক্ত করেছিলেন| যে রাজার সম্বন্ধে বলতাম, “আমরা রাজার ছায়াতেই বাঁচব| তিনি অন্য জাতির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করবেন|” 21 ইদোমের জনগণ, সুখী হও| ইদোমের লোকরা তোমরা যারা উসে থাকো, সুখী হও| কিন্তু মনে রেখো প্রভুর পানপাত্র তোমারও চারিদিক ঘিরে আসবে| যখন তুমি সেই পানপাত্রে চুমুক দেবে (শাস্তি পাবে), তখন তুমি মাতাল হবে| তুমি সেই সময় নিজেকে উলঙ্গ করে ফেলবে| 22 সিয়োন, তোমার শাস্তি সম্পূর্ণ| তোমাকে আর বন্দী করে রাখা হবে না| কিন্তু ইদোমের জনগণ, প্রভু তোমাদের পাপের শাস্তি দেবেন| তিনি তোমাদের পাপের মুখোশ খুলে দেবেন|
1 আমাদের কি ঘটেছে তা স্মরণ করুন প্রভু| দেখুন আমরা কতটা লজ্জিত| 2 আগন্তুকরা এসে আমাদের মাতৃভূমি তছনছ করেছে| আমাদের ঘরবাড়ি বিদেশীদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে| 3 আমরা অনাথ হয়েছি| আমাদের পিতা নেই| মায়েদের বিধ্বার মতো অবস্থা| 4 পানীয় জলও আমাদের কিনে খেতে হয়| যে কাঠ আমরা ব্যবহার করি তার জন্যও মূল্য দিতে হয়| 5 য়োযালটি কাঁধের ওপর নিতে আমরা বাধ্য হয়েছি| আমাদের কোনও বিশ্রাম নেই| আমরা ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত| 6 মিশরের সঙ্গে আমরা একটি চুক্তি করেছি| যথেষ্ট পরিমাণে রুটি পাওয়ার জন্য অশূরদের সঙ্গেও আমরা একটা চুক্তি করেছি| 7 আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছিল| কিন্তু তারা এখন মৃত| তাদের সেই পাপের শাস্তি এখনও আমাদের ভোগ করতে হচ্ছে| 8 দাসরাই এখন আমাদের শাসক| কেউই ওদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে নি| 9 আমরা খাদ্যের জন্য জীবন দিই| মরুভূমি আমাদের মেরে ফেলে| 10 আমাদের চামড়া উনুনের মতো গরম নুযে পড়েছে| ক্ষুধার জ্বালায় প্রচণ্ড জ্বর এসেছে| 11 শএুরা সিয়োনের মেয়েদের ধর্ষণ করেছে| তাদের কাছে যিহূদার কুমারী কন্যারাও আছে| 12 শএুরা আমাদের রাজপুত্রদের ফাঁসি দিয়েছে| তারা প্রবীণদের সম্মান দেয় নি| 13 শএুরা আমাদের যুব সম্প্রদায়কে শস্য পেষাই করতে বাধ্য করেছে| তারা যুবকদের ভারী কাঠের গুঁড়ি বইতে জোর করেছে| 14 শহরের প্রবেশদ্বার প্রবীণরা আর বসে না| যুবকরা আর গান বাজনা করে না| 15 আমাদের হৃদয়ে আর আনন্দ নেই| আমাদের নাচ অশ্রু জলে রূপান্তরিত হয়েছে| 16 মাথা থেকে আমাদের মুকুট খুলে পড়ে গেছে| সমস্ত কিছু এমশঃ খারাপ হয়ে উঠেছে| এসব হচ্ছে আমাদের পাপের জন্যই| 17 এসব কারণে আমরা চোখে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি না| আমাদের হৃদয়ও দুর্বল হয়ে পড়েছে| 18 সিয়োন পর্বত এখন এক পরিত্যক্ত জায়গা| শিয়ালের অবাধ বিচরণভূমি| 19 কিন্তু প্রভু আপনি চিরকাল রাজত্ব করেন| আপনার রাজকীয় সিংহাসন যুগ যুগ ধরে অটুট থাকে| 20 প্রভু! মনে হচ্ছে আপনি একেবারেই আমাদের ভুলে গিয়েছেন| মনে হচ্ছে দীর্ঘ সময় আপনি আমাদের একাকী ফেলে দূরে আছেন| 21 প্রভু, আমাদের আপনার কাছে ফিরিয়ে দিন| আমরা আনন্দের সঙ্গে ফিরে আসতে চাই আপনার কাছে| আবার আগের মতো জীবনযাপন করতে চাই| 22 আমাদের ওপর আপনি প্রচণ্ড রুদ্ধ| আপনি কি আমাদের সম্পুর্ণ বাতিল করেছেন|
1 আমি যাজক বুষির পুত্র যিহিষ্কেল| আমি কবার নদী তীরে বাবিলে নির্বাসনে ছিলাম| সে সময় আকাশ খুলে গিয়েছিল এবং আমি ঈশ্বরীয দর্শন পেয়েছিলাম|এটা ছিল ত্রিশতম বছরের চতুর্থ মাসের পঞ্চম দিন| যিহোয়াখীন রাজার রাজত্বের সময় নির্বাসনের পঞ্চম বছরের ঐ মাসের পঞ্চম দিনে প্রভুর এই কথাগুলি যিহিষ্কেলের কাছে এসেছিল| প্রভুর ক্ষমতাও ঐ জায়গায় তার ওপর এল| 2 3 4 আমি (যিহিষ্কেল) দেখলাম উত্তর দিক থেকে একটা বড় ঝড় আসছে| জোরালো বাতাসের সঙ্গে এক বড় মেঘ, মেঘের মধ্যে থেকে আগুন ঝলসে উঠছিল| তার চারদিকে আলো চমকাচ্ছিল; মনে হচ্ছিল যেন উত্তপ্ত ধাতু আগুনে জ্বলছে| 5 মেঘের মধ্যে ছিল চারটি পশু যাদের মানুষের মত রূপ| 6 প্রত্যেক পশুর চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল| 7 তাদের পাগুলো সোজা, দেখতে যেন গরুর পায়ের মত| আর তা পালিশ করা পিতলের মত চকচক করছিল| 8 তাদের পাখার তলায় মানুষের হাত ছিল| চারটি পশুর প্রত্যেকের চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল| ডানাগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত ছিল| 9 যাবার সময় সেই পশুরা পিছন ফেরেনি| তারা সোজা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল| 10 প্রত্যেক পশুর চারটি করে মুখ ছিল| প্রত্যেকের সামনের মুখটা ছিল মানুষের মুখের মত, ডানদিকের মুখটা ছিল সিংহের মত, বাম দিকের মুখটা ছিল গরুর মত, আর পিছনের মুখটা ঈগলের মত| 11 পশুগুলির ডানা তাদের উপর ছড়িয়ে ছিল| প্রত্যেক পশু অপর পশুকে স্পর্শ করার জন্য দুটি করে ডানা বাড়িয়ে রেখেছিল| আর অন্য দুটি ডানা দিয়ে নিজের দেহ ঢেকে রেখেছিল| 12 প্রত্যেক পশু যে দিকে দেখছে সেই দিকেই যাচ্ছিল| আর বাতাস যে দিকে তাদের উড়িযে নিয়ে যাচ্ছিল শুধু সেই দিকেই যাচ্ছিল| কিন্তু চলার সময় তারা যে দিকে যেত সেই দিকে তাকাচ্ছিল না| 13 পশুগুলো দেখতে একই রকম ছিল|পশুদের মধ্যবর্তী স্থানটি দেখতে আগুনে জ্বলা কযলার আভার মত লাগছিল| এই ছোট ছোট মশালের মত আগুনগুলো পশুদের মধ্য দিয়ে তাদের চারি দিকে ঘুরছিল| আগুন উজ্জ্বল ভাবে জ্বলছিল আর তার থেকে বিদ্য়ুত চমকাচ্ছিল! 14 সেই সব পশুরা সামনে পেছনে বিদ্য়ুতের মত দৌড়চ্ছিল! 15 আমি পশুদের দিকে তাকালাম এবং সেই সময় আমি দেখলাম চারটি চাকা মাটি স্পর্শ করে রয়েছে| প্রত্যেক পশুর একটি করে চাকা ছিল| প্রত্যেকটা চাকা দেখতে একই রকম, দেখে মনে হচ্ছিল যেন স্বচ্ছ হলুদ রঙের কোন অলঙ্কার থেকে তৈরী| দেখে মনে হচ্ছিল যেন চাকার ভেতরে চাকা রয়েছে| 16 17 চাকাগুলি যে কোনো দিকে যাবার জন্য ঘুরতে পারত, কিন্তু চলবার সময় চাকাগুলো তাদের দিক্ পরিবর্ত্তন করেনি| 18 চাকার ধারগুলো ছিল লম্বা এবং ভয়ঙ্কর! চার চাকার ধার ছিল চোখে পূর্ণ| 19 চাকাগুলি সব সময় পশুদের সঙ্গেই যাচ্ছিল| পশুরা আকাশে গেলে চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল| 20 বাতাস যেখানে তাদের নিয়ে যেতে চাইছিল তারা সেখানেই যাচ্ছিল, আর চাকাগুলোও তাদের সঙ্গে যাচ্ছিল| কারণ চাকার মধ্যে পশুগুলোর আত্মা ছিল| 21 তাই পশুরা চললে চাকাগুলোও চলছিল, থামলে চাকাগুলোও থামছিল| চাকাগুলো শূন্যে গেলে পশুরাও তাদের সঙ্গে যাচ্ছিল| কারণ চাকাগুলির মধ্যেই বাতাস ছিল| 22 পশুগুলির মাথার ওপর খুব আশ্চর্য় কোন একটা জিনিস ছিল| সেটা ছিল ওলটানো এক পাত্রের মত কোন একটা জিনিষ আর সেই ওলটানো পাত্র ছিল স্ূফুটিকের মতো স্বচ্ছ| 23 এই পাত্রের ঠিক নীচেই একটি পশুর ডানাসমূহ পরবর্তী পশুকে স্পর্শ করার চেষ্টা করছিল| দুটি ডানা এক দিকে ছড়িয়ে থাকছিল আর অন্য দুটি অন্যদিকে ছড়িয়ে দেহকে ঢেকে রেখেছিল| 24 তারপর আমি ঐ ডানাগুলোর শব্দ শুনলাম| প্রত্যেকবার ভ্রমণের সময় পশুদের ঐ ডানাগুলো খুব জোরে শব্দ করত, যেন একটি বিশাল জলপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে| তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের শব্দের মতোই উচ্চ ছিল| সেটা সৈন্যদলের আওয়াজের মত জোর ছিল| আর চলা শেষ হলে পশুগুলো তাদের ডানাগুলো নামিয়ে দিচ্ছিল| 25 পশুরা চলা বন্ধ করে তাদের ডানাগুলো নামাল| তারপর আরেকটি শব্দটি শোনা গেল; ঐ শব্দ তাদের মাথার ওপরের পাত্র থেকে এসেছিল| 26 সেই পাত্রের ওপরে সিংহাসনের মত একটা কিছু যেন দেখা গেল| আর তা ছিল নীলকান্ত মণির মত নীল| সেই সিংহাসনে মানুষের মত এক জনকে বসে থাকতে দেখা গেল! 27 আমি তার কোমরের ওপরটা দেখতে পেলাম| তাকে দেখতে যেন গরম ধাতুর মত, যেন তার চারিদিকে আগুন! আর আমি তার কোমরের নীচেও তাকালাম, দেখলাম তার চারিদিকে তাপযুক্ত আগুন| 28 তার চারি দিকের জাজ্বল্যমান আলো ছিল মেঘের মধ্যে একটি ধনুর মত| যেটা প্রভুর মাহাত্ব্য়ের চিত্র| আমি তা দেখামাত্র মাটিতে পড়ে প্রণাম করলাম| তারপর শুনলাম একটি শব্দ আমায় কিছু বলছে|
1 সেই শব্দটি আমায় বলল, “মনুষ্যসন্তান,উঠে দাঁড়াও, আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব|” 2 যে সময় তিনি আমার সঙ্গে কথা বললেন, তখন আত্মা আমাতে প্রবেশ করে আমাকে আমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড় করালো, তখন আমি তাঁকে আমার সঙ্গে কথা বলতে শুনতে পেলাম| 3 তিনি আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমি তোমাকে ইস্রায়েল পরিবারের কাছে কথা বলতে পাঠাচ্ছি| ঐ লোকেরা বহুবার আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে| তাদের পূর্বপুরুষরাও আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে| তারা আমার বিরুদ্ধে বহুবার পাপ করেছে| আর আজও আমার বিরুদ্ধে পাপ করে চলেছে| 4 আমি তোমাকে ঐ লোকদের কাছে কথা বলতে পাঠাচ্ছি| ওরা খুব একগুঁযে কঠিন মনা| কিন্তু তুমি অবশ্যই তাদের সঙ্গে কথা বল| বলবে, ‘প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন|’ 5 তারা বিদ্রোহী, কিন্তু তারা তোমার কথা শুনুক বা না শুনুক, তোমাকে অবশ্যই ওদের কাছে ওগুলো বলতে হবে যাতে তারা জানতে পারে যে তাদের মধ্যে এক জন ভাব্বাদী বাস করছে| 6 “মনুষ্যসন্তান, ঐসব লোকদের ভয় পেও না| যদি মনে হয় তুমি কাঁটাঝোপ, কাঁটা এবং কাঁকড়া বিছের ষ্ঠারা ঘিরে রয়েছ তাও তারা যা বলে তাতে ভয় পেও না| এটা সত্যি যে তারা তোমার বিরুদ্ধে যাবে এবং তোমায় আঘাত করতে চেষ্টা করবে| তারা তোমার কাছে কাঁটার মতো মনে হবে| তোমার মনে হবে যেন তুমি কাঁকড়া বিছের মধ্যে বাস করছ| কিন্তু তাদের কথায় ভয় পেও না| তারা বিদ্রোহী| তাদের মুখ দেখে ভয় পেও না| 7 আমি যা বলি তা তুমি অবশ্যই তাদের বলবে| আমি জানি তারা তোমার কথা শুনবে না| তারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করাও ছাড়বে না! কারণ তারা বিদ্রোহী বংশ| 8 “মনুষ্যসন্তান, আমি যা বলি তা অবশ্যই শোন| ঐ বিদ্রোহীদের মত আমার বিরুদ্ধে উঠো না| তোমার মুখ খোল এবং আমি যে বাক্য দিচ্ছি তা গ্রহণ কর, তারপর তা লোকদের বল| এই বাক্যগুলি ভোজন কর|” 9 এখন আমি (যিহিষ্কেল) দেখলাম একটা হাত আমার দিকে এগিয়ে আসছে| সেই হাতে একটা বাক্য লেখা গোটানো পুঁথি ছিল| 10 আমি যাতে পড়তে পারি তার জন্য ঐ হাতটি গোটানো পুঁথিটি খুলে ধরল| আমি সামনে এবং পেছনের লেখা দেখলাম| তাতে ছিল বিভিন্ন ধরণের দুঃখের গান, দুঃখের গল্প ও সাবধান বাণীসমূহ|
1 ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, যা দেখছ খাও| এই গোটানো পুঁথি ভোজন কর, এবং এই সমস্ত কথা ইস্রায়েল পরিবারকে গিয়ে বল|” 2 তাই আমি আমার মুখ খুললাম এবং তিনি সেই গোটানো পুঁথিটি আমার মুখে দিলেন| 3 তখন ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমি তোমায় এই গোটানো পুঁথি দিচ্ছি| এটা গিলে ফেল! এই গোটানো পুঁথি তোমার উদর পূর্ণ করুক|”তাই আমি সেই গোটানো পুঁথি খেয়ে ফেললাম আর তার স্বাদ আমার মুখে মধুর মত মিষ্টি লাগল| 4 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবারের কাছে যাও| তাদের কাছে আমার বাক্য বল| 5 আমি তোমাকে এমন বিদেশীদের কাছে পাঠাচ্ছি না যাদের তুমি বুঝবে না| তোমাকে আরেকটা ভাষা শিখতে হবে না| আমি তোমাকে ইস্রায়েল পরিবারের কাছে পাঠাচ্ছি! 6 আমি তোমাকে বিভিন্ন দেশ বিদেশে পাঠাচ্ছি না যাদের ভাষা তুমি বুঝবে না| তুমি ঐসব লোকের কাছে গিয়ে কথা বললে তারা তোমার কথা শুনত| কিন্তু তোমায় ঐসব কঠিন ভাষা শিখতে হবে না| 7 না! আমি তোমায় ইস্রায়েল পরিবারের কাছে পাঠাচ্ছি| কেবল এই সব লোকের মন কঠিন, তারা বড় একগুঁযে| আর ইস্রায়েলের লোকরা তোমার কথা শুনতে অস্বীকার করবে| তারা আমার কথাও শুনতে চায় না| 8 কিন্তু আমি তোমাকে তাদের মতোই একগুঁযে করব| তোমার কপাল তাদের কপালের চেয়েও দৃঢ় করব! 9 হীরক চক্মকি পাথরের চেয়েও দৃঢ়| সেই ভাবেই তাদের চেয়ে তোমার কপাল দৃঢ় হবে| তুমি আরো একগুঁযে হবে আর তাই ঐ লোকদের ভয় করবে না| সব সময় আমার বিরুদ্ধাচরণকারী ঐ লোকদের তুমি ভয় করবে না|” 10 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমার প্রতিটি কথা তোমার শোনা উচিত, আর সেগুলো মনে রাখা উচিত| 11 নির্বাসনে রয়েছে এমন লোকদের কাছে যাও| তাদের কাছে গিয়ে বল, ‘আমাদের প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন|’ তারা শুনুক বা না শুনুক, তুমি তাদের এই কথাগুলো বলবে|” 12 তারপর বাতাস আমায় ওপরে উঠিযে দিল আর আমি আমার পেছনে একটা স্বর শুনতে পেলাম| সেটা ছিল বজ্রের মত জোরালো| শব্দটি বলল, “যেখানে ওটি ছিল সেই জায়গা থেকে উঠে আসা প্রভুর মহিমা|” 13 তারপর পশুরা সেই ডানা ঝাপটাতে লাগল আর তারা পরস্পরের গায়ে লাগলে ভীষণ শব্দ হল| আর তাদের সামনের চাকাগুলোও জোরে শব্দ করতে শুরু করল- তা বজ্রের মত জোরালো| 14 আত্মা আমায় তুলে নিয়ে গেল| আমি সেই স্থান পরিত্যাগ করলে খুব দুঃখিত ও আত্মায উষ্ঠিগ্ন হলাম| কিন্তু আমি আমার মধ্যে প্রভুর শক্তি অনুভব করলাম| 15 আমি ইস্রায়েলের সেই লোকদের কাছে গেলাম যাদের কবার নদীর ধারে তেল আবিবে বাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল| আমি গিয়ে তাদের মাঝে সাত দিন ধরে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলাম| 16 সাত দিন পর প্রভু আমায় বললেন, 17 “মনুষ্যসন্তান, আমি তোমাকে ইস্রায়েলের প্রহরী নিযুক্ত করছি| আমি তোমাকে যা কিছু বলব, তুমি সেই সম্বন্ধে ইস্রায়েলীয়দের সাবধান করে দেবে| 18 যদি আমি বলি, ‘এই মন্দ লোকটি মারা যাবে!’ তখন তুমি অবশ্যই তাকে সাবধান কোরো! তুমি তাকে অবশ্যই বলবে তার জীবনধারা পরিবর্ত্তন করতে ও মন্দ কাজ আর না করতে| সেই ব্যক্তিকে সাবধান না করলে সে মারা যাবে বটে কিন্তু তার মৃত্যুর জন্য আমি তোমাকে দায়ী করব! কারণ তুমি তার প্রাণ বাঁচাতে তার কাছে যাওনি| 19 “হতে পারে তুমি কোন ব্যক্তিকে তার জীবন পরিবর্ত্তন ও পাপ হতে বিরত হবার কথা বললেও সে সেই সাবধান বাণী শুনতে অস্বীকার করল; সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি মারা যাবে| সে পাপ করেছে বলেই মারা যাবে কিন্তু তুমি তাকে সাবধান করেছিলে বলে নিজের প্রাণ বাঁচাবে| 20 “এক জন ভালো লোক যদি আর ভালো হতে না চায়, আর আমি যদি তার সামনে এমন একটি বিক্ রাখি যে সে মারা যাবে তাহলে সে মারা যাবে কারণ সে পাপ কাজ করেছিল এবং তুমি তার মৃত্যুর জন্য দায়ী হবে কারণ তুমি তাকে সাবধান করোনি এবং সে যে সকল ভাল কাজ করেছিল তা আর স্মরণ করা হবে না| 21 কিন্তু তুমি যদি সেই ভালো লোকটিকে পাপ কাজ থেকে বিরত হতে বল এবং সে যদি আর পাপ না করে তবে সে মরবে না| কারণ তুমি তাকে সাবধান করলে সে তোমার কথায় কান দিয়েছিল| এই ভাবে তুমি তোমার প্রাণ বাঁচালে|” 22 প্রভুর পরাক্রম আমার কাছে এলে তিনি আমায় বললেন, “ওঠো, সেই উপত্যকায় যাও| আমি সেই জায়গায় তোমার সঙ্গে কথা বলব|” 23 তাই আমি উঠে সেই উপত্যকায় গেলাম| প্রভুর মহিমা সেখানে ছিল- যেমনটি আমি কবার নদীর ধারে দেখেছিলাম| তাই আমি মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করলাম| 24 কিন্তু একটি বাতাস এসে আমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড় করালেন| তিনি আমায় বললেন, “যাও বাড়ি গিয়ে নিজেকে ঘরে তালাবন্ধ কর| 25 মনুষ্যসন্তান, লোকে দড়ি নিয়ে এসে তোমাকে বাঁধবে| তারা তোমাকে লোকদের মধ্যে যেতে দেবে না| 26 আমি তোমার জিভ তোমার তালুতে আটকে দেব, তুমি কথা বলতে পারবে না| তাই, এই লোকরা যে ভুল করছে সে সম্বন্ধে তাদের শিক্ষা দেবার জন্য কেউ থাকবে না| কারণ ঐ লোকরা সর্বদাই আমার বিরুদ্ধাচরণ করে| 27 কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব আর তোমাকে কথা বলতে দেব| কিন্তু তুমি অবশ্যই তাদের বলবে, ‘প্রভু আমাদের সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন,’ যদি কেউ শুনতে চায় ভালো; যদি কেউ না শুনতে চায় তাও ভালো| কারণ ঐ লোকরা সবসময় আমার বিরুদ্ধে যায়|
1 “মনুষ্যসন্তান, একটি ইঁট নাও আর তার ওপর আঁচড় কেটে জেরুশালেম শহরের একটা ছবি আঁকো| 2 তারপর এমন অভিনয় কর যেন তুমি একটি শহর দখলকারী সৈন্যদল| শহরের প্রাচীরগুলোর ওপর উঠে যাতে শএু সৈন্যরা শহরে প্রবেশ করতে পারে তার জন্য স্তম্ভসমূহ এবং একটি জাঙ্গাল তৈরী কর| প্রাচীর ভেদক যন্ত্র নিয়ে এস এবং শহরের চারিধারে সৈন্য শিবির বসাও| 3 তারপর একটা চ্যাপটা লোহার চাটু নিয়ে এস এবং সেটাকে তোমার এবং শহরের মাঝখানে রাখো| সেটা তোমার ও শহরের মধ্যে একটা লোহার প্রাচীরের মত হোক| এই ভাবে তুমি দেখাবে যে তুমি ঐ শহরের বিরুদ্ধে| তুমি সেই শহর ঘিরে তা আক্রমণ করবে| কারণ তা হবে ইস্রায়েল পরিবারের সামনে দৃষ্টান্তস্বরূপ| 4 “তারপর বাম পাশ ফিরে শুয়ে পড়| তুমি এমন আচরণ করবে যাতে দেখাবে যে ইস্রায়েলের পাপ তোমার ঘাড়ে| সেই দোষ তুমি তত দিন ধরেই বইবে যত দিন বাম পাশ ফিরে শুয়ে থাকবে| 5 তুমি অবশ্যই 390 দিন ধরে ইস্রায়েল জাতির দোষ বইবে| এইভাবে আমি তোমায় বলছি কত দিন ধরে যিহূদা শাস্তি পাবে; এক দিন এক বছরের সমান| 6 সেই সময়ের পর তুমি 40 দিন ধরে ডানপাশ ফিরে শুয়ে থাকবে| এই সময় তুমি যিহূদার পাপ 40 দিন ধরে বইবে| এক দিন এক বছরের সমান| আমি বলছি যিহূদা কত কাল শাস্তি ভোগ করবে|” 7 ঈশ্বর আবার বললেন, “এখন, তোমার হাতের আস্তিন গোটাও এবং ইটটার উপর তোমার হাত ওঠাও| অভিনয় কর যেন তুমি জেরুশালেম শহর আক্রমণ করছ| শহরটির বিরুদ্ধে ভাব্বানী কর| 8 এখন দেখ আমি দড়ি দিয়ে তোমাকে বাঁধছি| তুমি এক দিক থেকে অন্য দিকে গড়িযে যেতে পারবে না, যে পর্য়ন্ত না শহরের বিরুদ্ধে তোমার আক্রমণ শেষ হয়|” 9 ঈশ্বর আরও বললেন, “তুমি অবশ্যই কিছু শস্য নিয়ে এসে রুটি তৈরী কর| গম, বার্লি, বীন, মসুর, ভুট্টা ও কাজু এই সব কিছু কিছু পরিমাণ নাও| এই সমস্ত একটি পাত্রে নিয়ে মেশাও, তারপর তা গুঁড়ো করে তা দিয়ে আটা তৈরী করে রুটি বানাও| তুমি 390 দিন ধরে কেবল সেই রুটি খাবে| 10 প্রতিদিন কেবল 1 পোযা ময়দা নিয়ে রুটি বানাবে| সারা দিন ধরে মাঝে মাঝে সেই রুটি খেও| 11 আর প্রত্যেকদিন কেবল 3 পেয়ালা জল পান করো| সময় সময় সমস্ত দিন ধরেই তা খেতে পার| 12 প্রতিদিন, নিজের রুটি তৈরী করবে| কিছু মানুষের মল নিয়ে তা আগুনে পুড়িও| তারপর সেটা যখন পুড়ছে তখন রুটিটা সেঁকো| যেখানে লোকরা তোমাকে দেখতে পাবে সেখানে রুটিটা খাবে|” 13 তারপর প্রভু বললেন, “এটা বোঝাবে যে ইস্রায়েল পরিবার বিদেশে অশুচি রুটি খাবে| আমি তাদের ইস্রায়েল ত্যাগ করে সেইসব দেশে বাস করতে বাধ্য করেছি! 14 তখন আমি বললাম, “হায, প্রভু আমার সদাপ্রভু, আমি কখনও অশুচি খাবার খাইনি| রোগে মারা গেছে এমন কোন পশু বা বন্য পশুতে মেরে ফেলেছে এমন কোন পশুও আমি কখনও খাইনি| আমি শিশুকাল থেকে আজ পর্য়ন্ত কখনও অশুচি মাংস খাইনি| কখনই ঐসব মন্দ মাংস আমার মুখে প্রবেশ করেনি|” 15 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “ঠিক আছে! রুটি পাক করার জন্য গোবরের ঘুঁটে ব্যবহার করো| মানুষের মল ব্যবহার করার দরকার নেই|” 16 তারপর ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমি জেরুশালেমের রুটির য়োগান নষ্ট করছি| লোকে অল্প পরিমান রুটিই আহার করার জন্য পাবে| তারা তাদের খাদ্যের য়োগান সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন হবে| আর পান করার জলও অল্প থাকবে| আর জল পান করার সময় তারা ভীষণ ভীত হবে| 17 কারণ লোকদের আহার ও পান করার জন্য যথেষ্ট খাবার ও জল থাকবে না| লোকরা একে অপরের দিকে শুধু তাকাবে কারণ তারা জানে না কি করতে হবে| তারা একে অপরকে তাদের পাপের জন্য ক্ষীণ হতে দেখবে|”
1 “হে মনুষ্যসন্তান, একটি ধারালো তরবারি নেবে এবং তা নাপিতের ক্ষুরের মত ব্যবহার করবে| তোমার মাথার চুল ও দাড়ি কামিয়ে সেইটা একটি ওজন পাত্রে ওজন করবে| তোমার চুল সমান তিন ভাগে ভাগ কর| তারপর তোমার শহর দখল করা সম্পূর্ণ হলে তোমার চুলের এক- তৃতীয়াংশ ‘শহরে’ পুড়িয়ে ফেল|এর অর্থ হল, কিছু লোক শহরের মধ্যে মারা যাবে| তারপর তরবারি ব্যবহার করে চুলের অন্য এক তৃতীয়াংশকে শহরের বাইরে কাটবে| এর অর্থ হল, কিছু লোক শহরের বাইরে মারা যাবে| তারপর এক-তৃতীয়াংশ চুল বাতাসে ছুঁড়ে দাও- যাতে বাতাস তা বহু দূরে নিয়ে যায়| এতে বোঝাবে যে আমি আমার তরবারি বের করে কিছু লোককে খুব দূরের শহর পর্য়ন্ত তাড়া করে নিয়ে যাবো| 2 3 কিন্তু তুমি তার মধ্যে অবশ্যই কিছু চুল নিয়ে তোমার পোশাকের ভাঁজে রেখে দেবে| এতে বোঝাবে যে আমি আমার কিছু লোককে পরিত্রাণ করব| 4 তুমি অবশ্যই আরও কিছু চুল নিয়ে আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দেবে| এর অর্থ হবে যে একটা আগুন উত্পন্ন হয়ে তা ইস্রায়েলীয় পরিবারসমূহকে ধ্বংস করে দেবে| 5 তারপর প্রভু আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “ইটটি জেরুশালেমের চিত্র| আমি জেরুশালেমকে অন্য জাতির মধ্যে রেখেছি, আর তার চারিদিকে অন্য জাতিসমূহ রয়েছে| 6 জেরুশালেমের লোকরা আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচরণ করেছে| তারা অন্য যে কোন জাতির চেয়ে অধিক মন্দ! তারা তাদের চার ধারের দেশের যে কোন লোকের চেয়ে আমার দেওয়া বিধি অনেক বেশী করে লঙঘন করেছে| তারা আমার আজ্ঞা শুনতে অস্বীকার করেছে| তারা আমার বিধিগুলি পালন করেনি!” 7 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বললেন, “তোমরা আমাকে মান্য করনি| তোমাদের চার ধারে বসবাসকারী লোকদের চেয়েও তোমরা আমার আজ্ঞা অনেক বেশী অমান্য করেছ এবং তারা যেসব জিনিস মন্দ বলে বিবেচনা করে তাও করেছ!” 8 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমিও তোমাদের বিরুদ্ধে! আর ঐ লোকদের চোখের সামনে আমি তোমাদের শাস্তি দেব| 9 আমি তোমাদের প্রতি এমন কাণ্ড ঘটাব যা আগে ঘটাই নি আর পরেও ঘটাব না! কেন? কারণ তোমরা বহু ভয়ঙ্কর কাজ করেছ| 10 জেরুশালেমের লোকরা এত ক্ষুধার্ত্ত হবে যে পিতামাতা তাদের নিজেদের সন্তানদের এবং সন্তানরা তাদের পিতামাতাদের মাংস খাবে| আমি তোমাদের বহু ভাবে শাস্তি দেব| আর অবশিষ্ট যারা বেঁচে থাকবে, তাদের আমি বাতাসে ছড়িয়ে দেব|” 11 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “জেরুশালেম, আমার প্রাণের দিব্য দিয়ে বলছি যে আমি তোমায় শাস্তি দেব! আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে তোমায় শাস্তি দেব! কেন? কারণ তুমি আমার পবিত্র স্থানের প্রতি ভয়ঙ্কর কাজ করেছ| তুমি এমন ভয়ঙ্কর কাজ করেছ যাতে তা ময়লা হয়ে গেছে! আমি তোমায় শাস্তি দেব, দয়া করব না| দুঃখ বোধ করব না! 12 শহরের মধ্যে মহামারী এবং দুর্ভিক্ষে তোমার এক-তৃতীয়াংশ লোক মারা যাবে| শহরের বাইরে এক-তৃতীয়াংশ লোক যুদ্ধে মারা যাবে| তারপর আমি আমার তরবারি বের করে বাকী এক-তৃতীয়াংশকে দূর দেশ পর্য়ন্ত তাড়া করে নিয়ে যাব| 13 কেবল তারপরই আমার প্রজাদের প্রতি আমার রোধ ক্ষান্ত হবে| তারা আমার প্রতি যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্যই যে তারা শাস্তি পেয়েছে সেটা আমি জানাব| আর তারাও জানবে যে আমিই প্রভু, এবং তাদের প্রতি আমার গভীর ভালোবাসার জন্যই আমি তাদের কাছে কথা বলেছিলাম!” 14 ঈশ্বর বললেন, “জেরুশালেম, আমি তোমায় ধ্বংস করব- তোমায় ইঁট পাথরের ঢিবি ছাড়া অন্য কিছু বলে মনে হবে না| তোমার চার পাশের লোকরা তোমাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে| যারাই তোমার পাশ দিয়ে হেঁটে যাবে তারাই তোমাকে নিয়ে মজা করবে| 15 তোমার চার ধারের লোক তোমাকে নিয়ে মজা করলেও তাদের কাছে তুমি এক শিক্ষা স্বরূপ হবে| তারা দেখবে যে আমি এোধ তোমাকে শাস্তি দিয়েছি| আমি অত্যন্ত এোধ করেছিলাম| সাবধানও করেছিলাম| আমিই প্রভু জানিয়ে ছিলাম আমি কি করব! 16 তোমায় বলেছিলাম যে ভযানক দুর্ভিক্ষ পাঠাব| বলেছিলাম এমন বিষয় পাঠাব যা তোমায় ধ্বংস করবে| আমি তোমায় বলেছিলাম যে তোমার খাবারের য়োগান শেষ করে দেব আর সেই দুর্ভিক্ষ সময় সময় আসবে| 17 আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তোমার বিরুদ্ধে ক্ষুধা ও বন্য জন্তুদের পাঠাব যা তোমার শিশুদের হত্যা করবে| আমি বলেছিলাম শহরের সর্বত্র রোগ এবং মৃত্যু বিরাজ করবে| আমি বলেছিলাম শএুসেনাকে তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসতে| আমি প্রভুই তোমাকে বলেছিলাম যে এই সব ঘটবে|”
1 তারপর প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল| 2 তিনি বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের পর্বতগুলির দিকে ফের| আমার জন্য তাদের কাছে ভাব্বাণী বল|” 3 ঐসব পর্বতগুলিকে এই কথাগুলি বল:‘ইস্রায়েলের পর্বত আমার প্রভু ও সদাপ্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা শোন! প্রভু আমার সদাপ্রভু পাহাড়, পর্বত ও উপত্যকাগুলিকে এইসব কথা বলেন| দেখ! আমিই (ঈশ্বর) তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শএু আনছি| আমি তোমার উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করব! 4 তোমার বেদীগুলি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দেব| তোমার ধুপধূনোর বেদী গুঁড়িযে দেওয়া হবে| আর তোমার নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সামনে আমি তোমার মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলব| 5 ইস্রায়েলের লোকদের মৃতদেহগুলিও আমি নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সামনে ছুঁড়ে দেব| আমি তোমার হাড়গুলি বেদীর চারধারে ছড়িয়ে দেব| 6 যেখানেই তোমার লোক বাস করবে সেখানেই অমঙ্গল ঘটবে| তাদের শহরগুলি পাথরের ঢিবিতে পরিণত হবে| তাদের উচ্চ স্থানগুলো ধ্বংস করা হবে| যেন ঐসব পূজার স্থানগুলি আর কখনও ব্যবহার করা না হয়| ঐ বেদীগুলি ধ্বংস করা হবে আর লোকরা কখনও ঐ নোংরা মূর্ত্তিগুলোর পূজো করবে না| ধুপধূনোর বেদীগুলোও গুঁড়িযে দেওয়া হবে| যা কিছু তোমরা গড়েছিলে তার সবই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হবে| 7 তোমার লোকদের হত্যা করা হবে এবং তখন তুমি জানবে যে আমিই প্রভু!”‘ 8 ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু আমি তোমার কিছু লোককে পালাতে দেব| তারা অল্প কালের জন্য অন্য দেশে বাস করবে| আমি তাদের ছড়িয়ে দেব এবং অন্য দেশে বাস করতে বাধ্য করব| 9 তারপর ঐ অবশিষ্টদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে| তাদের অন্য দেশে বাস করতে বাধ্য করা হবে| কিন্তু ঐ অবশিষ্টরা আমায় স্মরণ করবে| আমি তাদের আত্মা ভগ্ন করব| তারা যে মন্দ কাজ করেছিল তার জন্য নিজেদেরই ঘৃণা করবে| অতীতে তারা আমার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, আমায় ত্যাগ করেছিল| তারা নোংরা মূর্ত্তির পেছনে দৌড়েছিল| তারা এমন স্ত্রীর মত ব্যবহার করেছিল যে নিজের স্বামীকে ত্যাগ করে অন্য পুরুষের পেছনে দৌড়ায| তারা বহু ভয়ঙ্কর কাজ করেছে| 10 কিন্তু তারা জানবে যে আমিই প্রভু| তারা এও জানবে যে যদি আমি বলি কিছু করব তবে তা করেই থাকি| তারা জানবে তাদের প্রতি যেসব অমঙ্গল ঘটেছে তার সব আমিই ঘটিযে ছিলাম|” 11 তারপর প্রভু, আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “হাততালি দাও ও পা দাপাও| ইস্রায়েলের লোকরা যেসব ভযানক কাজগুলি করেছে তার বিরুদ্ধে কথা বল| তাদের সাবধান করে বল যে রোগে, তরবারির দ্বারা এবং ক্ষুধায তারা মারা যাবে| তাদের বল যে তারা যুদ্ধেও মারা যাবে| 12 দূরের লোকরা রোগে মারা যাবে| কাছের লোকরা তরবারির আঘাতে মারা যাবে এবং তারপর যারা বেঁচে থাকবে তারা ক্ষুধায মারা যাবে| কেবল তখনই আমার রোধ প্রশমিত হবে| 13 আর কেবল তখনই তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| তোমরা এটা তখনই জানবে যখন দেখবে তোমাদের দেহগুলি নোংরা প্রতিমাগুলির সামনে ও তার বেদীর চারধারে পড়ে আছে| তোমাদের প্রতিটি পূজা স্থানের কাছেই এবং প্রত্যেক পর্বত পাহাড়ের নীচে সবুজ বৃক্ষের তলায় ও সপত্র ওক বৃক্ষের তলায় ঐ দেহগুলি পাওয়া যাবে| ঐ সমস্ত জায়গায় তোমরা তোমাদের সুগন্ধি নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছিলে| ঐসব তোমাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর জন্য সুগন্ধস্বরূপ ছিল| 14 কিন্তু আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার হাত ওঠাব এবং তোমাকে ও তোমার লোকেদের শাস্তি দেব, তা তারা যেখানেই থাকুক না কেন| আমি তোমার দেশ ধ্বংস করব আর তা দিব্লা মরুভূমির থেকেও শূন্য হবে| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”
1 তারপর প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| 2 তিনি বললেন, “এখন, মনুষ্যসন্তান, প্রভু আমার সদাপ্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা এসেছে| এই বার্তাটি ইস্রায়েল দেশের জন্য|শেষ কাল, শেষ সময় আসছে, সমস্ত দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে| 3 তোমার শেষ দশা এবার আসছে! আমি দেখাব যে আমি তোমার ওপর কত রুদ্ধ| তুমি যেসব মন্দ কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমায় শাস্তি দেব| তুমি যে সব জঘন্য কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমায় তার মূল্য দিতে বাধ্য করব| 4 আমি তোমার প্রতি কোন দয়া দেখাব না| আমি তোমার জন্য দুঃখ অনুভব করব না| তুমি যেসব মন্দ কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমাকে শাস্তি দিচ্ছি| তুমি এমন জঘন্য কাজগুলি করেছ| এখন, তুমি জানবে যে আমিই প্রভু|” 5 প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐ কথাগুলি বলেছিলেন| “একের পর এক অমঙ্গল ঘটবে! 6 শেষ কাল আসছে আর তা খুব শীঘ্রই আসবে! 7 তোমরা যারা ইস্রায়েলে বাস করছ তোমাদের অন্তিমকাল আসছে| শাস্তির সেই দিন খুব শীঘ্রই ঘনিয়ে আসছে| পর্বতের ওপর কোলাহল এমে এমে বেড়েই চলেছে| 8 এখন খুব শীঘ্রই আমি দেখাব যে আমি কত রুদ্ধ| আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার সমস্ত রোধ প্রকাশ করব| তোমাদের সমস্ত মন্দ কাজের জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব| তোমরা যে সমস্ত ঘৃণিত কাজ করেছিলে তার জন্য তোমাদের আমি শাস্তি দেব| 9 আমি তোমাদের প্রতি কোন দয়া দেখাব না| তোমাদের জন্য দুঃখিত হব না| তোমরা যেসব মন্দ কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দিচ্ছি| তোমরা এমন সমস্ত ঘৃণিত কাজ করেছ| এখন, জানবে যে আমিই প্রভু| 10 “শাস্তির ঐ সময়, যেমন করে উদ্ভিদের অঙ্কুরোদ্গম, মুকুলাযন ও কুসুম প্রস্ফুটিত হয়, সেই রকম ভাবে এসেছে| ঈশ্বর সঙ্কেত দিয়েছেন, শএু তৈরী, গর্বিত রাজা নবূখদ্নিত্সর প্রস্তুত| 11 সেই লোক ঐসব মন্দ লোকদের শাস্তি দেবার জন্য তৈরী| ইস্রায়েলে অনেক লোকই রয়েছে কিন্তু সে তাদের একজনও নয়| সে ঐ জনতার ভীড়ের কেউ নয়| সে ঐ লোকদের কোন গুরুত্বপূর্ণ নেতাও নয়| 12 “শাস্তির সেই সময় এসেছে| সেই দিন এখানে লোকে যারা জিনিস কেনাকাটা করে তারা আনন্দিত হবে না, আর যারা জিনিস বেচে তারাও বেচতে খারাপ বোধ করবে না| কারণ সেই ভযানক শাস্তি সবার প্রতিই ঘটবে| 13 লোকে যারা তাদের সম্পত্তি বিক্রি করেছিল তারা আর তার কাছে ফিরে যাবে না| এমনকি যদি কেউ জীবিত ও পালিয়ে যায় তাও সে নিজের সম্পত্তির কাছে ফিরে যাবে না| কারণ এই দর্শন সমস্ত জনতার জন্য| তাই যদি কোন ব্যক্তি জীবিত পালায় তাতে অন্যেরা ভাল বোধ করবে না| 14 “তারা লোকদের সাবধান করতে শিঙা বাজাবে| লোকরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে| কিন্তু তারা যুদ্ধ করতে যাবে না| কারণ আমি সমস্ত জনতাকে দেখাব আমি কত রুদ্ধ| 15 শএু তার তরবারি নিয়ে শহরের বাইরে রয়েছে| রোগ ও ক্ষুধা শহরের মধ্যে| যদি কোন লোক থেকে যায় তবে এক শএুসেনা তাকে হত্যা করবে| যদি সে শহরে থাকে তবে ক্ষুধা ও রোগ তাকে ধ্বংস করবে| 16 “কিন্তু কিছু লোক পালাবে| ঐ অবশিষ্টরা পাহাড়ে দৌড়ে যাবে| কিন্তু তারা সুখী হবে না তাদের পাপের জন্য দুঃখ বোধ করবে| তারা ঘুঘুর মত গোঙাবে| 17 লোকে তাদের হাত তুলতে ক্লান্ত ও দুঃখ বোধ করবে| তাদের পা জলের মত শিথিল মনে হবে| 18 তারা শোকবস্ত্র পরবে এবং ভয়ে আচ্ছন্ন হবে| তুমি তাদের মুখে লজ্জা দেখতে পাবে| তারা তাদের শোক ব্যক্ত করতে মাথা কামাবে| 19 তারা তাদের রূপো রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলবে| তাদের সোনাগুলিকেনোংরা বস্তার মত জ্ঞান করবে| কারণ প্রভু রোধন্বত হলে ঐসব জিনিস তাদের রক্ষা করতে পারবে না| ঐসব জিনিস আর কিছুই না কেবল লোককে পাপে ফেলার ফাঁদ| ঐসব জিনিস লোকদের প্রাণ তৃপ্ত করবে না অথবা তাদের পেটও ভরাতে পারবে না| 20 “ঐ লোকরা তাদের সুন্দর অলঙ্কার ব্যবহার করে প্রতিমা গড়েছিল| তারা ঐ প্রতিমার বিষয়ে গর্ব করেছিল| তারা তাদের ভয়ঙ্কর প্রতিমা গড়েছিল, ঐসব নোংরা জিনিস বানিয়েছিল| তাই আমি (ঈশ্বর) তাদের নোংরা বস্তার মত ছুঁড়ে ফেলব| 21 আমি আগন্তুক লোকদেরও তাদের ধনসম্পদ নিয়ে যেতে দেব| ঐ আগন্তুকরা তাদের নিয়ে ঠাট্টা করবে| ঐ দুষ্ট লোকরা তাদের সোনা ও রূপো নিয়ে চলে যাবে| 22 আমি তাদের থেকে আমার মুখ ফিরিয়ে নেব, তাদের দিকে তাকাব না| ঐ আগন্তুকরা আমার মন্দির ধ্বংস করবে, তারা পবিত্র গৃহের গোগনস্থানে ঢুকে তা অশুচি করবে| 23 “বন্দীদের জন্য শেকল তৈরী কর! কারণ হত্যা করার জন্য এবং অন্যাযের অপরাধে বহু লোককে শাস্তি দেওয়া হবে| 24 এই কারণে আমি অন্য জাতির মন্দ লোকেদের নিয়ে আসব| আর ঐ মন্দ লোকরা ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত বাড়িঘর অধিকার করবে| আমি বলবান সমস্ত লোকদের গর্ব চূর্ণ করব| অন্য জাতির ঐ লোকরা তোমাদের পূজার সমস্ত স্থান অধিকার করবে| 25 “তোমরা ভয়ে কাঁপবে| তোমরা শান্তির অন্বেষণ করবে কিন্তু শান্তি পাবে না| 26 তোমরা একটার পর একটা দুঃখের ঘটনা শুনবে| তোমরা দুঃসংবাদ ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাবে না| তোমরা ভাব্বাদীর খোঁজ করবে এবং তার কাছে দর্শন চাইবে, কিন্তু পাবে না| যাজকরা তোমাদের শিক্ষা দেবার জন্য কিছুই খুঁজে পাবে না| প্রবীণেরাও শিক্ষা দেবার জন্য কোন ভাল উপদেশ খুঁজে পাবে না| 27 তোমাদের রাজা মৃত লোকদের জন্য কাঁদবে| নেতারা শোকবস্ত্র পরবে| সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হবে| কেন? কারণ তারা যা করেছে তার জন্য তাদের পরিশোধ করতে আমি বাধ্য করব| তাদের শাস্তি আমি ঠিক করব| আর আমি তাদের শাস্তি দেব| তাহলে ঐ লোকরা জানবে যে আমিই প্রভু|”
1 একদিন আমি (যিহিষ্কেল) আমার বাড়িতে বসেছিলাম এবং যিহূদার প্রবীণরা আমার সামনে বসেছিল| এটা ছিল নির্বাসনের ষষ্ঠ বছরের ষষ্ঠ মাসের পঞ্চম দিনের কথা| হঠাত্ আমার প্রভু সদাপ্রভুর শক্তি আমার ওপর এল| 2 আমি আগুনের মত কিছু একটা দেখলাম| দেখে মনে হল যেন কোন মানুষের দেহ| কোমরের নীচ থেকে আগুনের মত| কোমরের উপর থেকে তিনি আগুনে রাখা উত্তপ্ত ধাতুর মত উজ্জ্ব্বলভাবে চমকাচ্ছিলেন| 3 তারপর আমি হাতের মত কিছু একটা দেখলাম| সেই হাত বেরিয়ে এসে আমার মাথার চুল টেনে আমায় ধরল| তারপর বাতাস আমায় শূন্যে তুলে নিল এবং তিনি আমাকে জেরুশালেমে ঈশ্বরীয দর্শনে নিয়ে গেলেন| তিনি আমাকে অভ্য়ন্তরের ফটক, অর্থাত্ উত্তর দিকের ফটকের কাছে নিয়ে গেলেন| যে মূর্ত্তি ঈশ্বরকে ঈর্ষান্বিত করে তা সেই ফটকে রয়েছে| 4 কিন্তু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা সেখানে ছিল| সমস্থলীতে কবার নদীর ধারে দর্শনে আমি যেমন দেখেছিলাম, এই মহিমা সেই রকমই দেখতে ছিল| 5 ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, সোজা উত্তর দিকে দেখ!” তাই আমি উত্তর দিকে তাকালাম| আর সেখানে বেদীর উত্তর দিকের দরজায সেই মূর্ত্তি ছিল যা ঈশ্বরকে ঈর্ষান্বিত করে| 6 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের লোকরা যে ভযানক কাজ করছে তা কি তুমি দেখছ? তারা আমার পবিত্র স্থানের ঠিক পাশেইঐ জিনিসটা গড়েছে| আর তুমি আমার সঙ্গে এলে এর থেকেও আরও ভযানক ঘৃণিত জিনিষ দেখতে পাবে|” 7 তাই আমি প্রাঙ্গণের মধ্যে প্রবেশ পথ দিয়ে গেলাম আর দেওয়ালে এক গর্ত দেখতে পেলাম| 8 ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, দেওয়ালে একটা গর্ত তৈরী কর|” তাই আমি দেওয়ালে একটা গর্ত তৈরী করলাম| আর সেখানে আমি একটা দরজা দেখতে পেলাম| 9 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “যাও, লোকরা এখানে যেসব মন্দ ও ভয়ঙ্কর ঘৃণিত কাজ করছে তা দেখ|” 10 তাই আমি ভেতরে গিয়ে তাকালাম আর দেখলাম বিভিন্ন ধরণের সরীসৃপ ও জন্তুদের মূর্ত্তি যাদের কথা চিন্তা করতেও ঘৃণা জন্মে সেই সবগুলো এবং ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত মূর্ত্তিগুলি দেখলাম| সব দেওয়ালেই ঐসব পশুদের ছবি খোদাই করা ছিল| 11 তারপর আমি লক্ষ্য করে দেখলাম যে শাফনের পুত্র যাসনিয় ও ইস্রায়েলের আরো 70 জন প্রবীণ সে স্থানে লোকদের সঙ্গে পূজা করছিল| তারা লোকদের সামনেই দাঁড়িয়েছিল| আর প্রত্যেক নেতার কাছে ছিল তার নিজের ধূপদানী| জ্বলা ধূপের ধোঁযার সেই সুগন্ধ উপরে উঠছিল| 12 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের নেতারা অন্ধকারে কি করে তা কি তুমি দেখেছ? প্রত্যেক জনের তার নিজের মূর্ত্তি পূজার জন্য আলাদা কক্ষ রয়েছে| ঐ লোকরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, ‘প্রভু আমাদের দেখতে পাবেন না| প্রভু এই দেশ ত্যাগ করে গেছেন|”‘ 13 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “এরপরও তুমি এই সব লোকদের আরও কত ঘৃণিত কাজ দেখতে পাবে!” 14 তখন ঈশ্বর আমাকে প্রভুর মন্দিরের প্রবেশ পথের দিকে নিয়ে চললেন| এই দরজাটি উত্তর দিকে অবস্থিত ছিল| সেখানে আমি মহিলাদের বসে বসে কাঁদতে দেখলাম| তারা তম্মুষের মূর্ত্তির জন্য শোক করছিল! 15 ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি এই সব ভয়ঙ্কর বিষয়গুলি দেখছ? আমার সঙ্গে এলে এর চেয়ে আরও খারাপ বিষয় দেখবে!” 16 তারপর তিনি আমাকে প্রভুর মন্দিরের ভিতরের প্রাঙ্গণে নিয়ে গেলেন| সেখানে, আমি 25 জন লোককে উপুড় হয়ে পূজা করতে দেখলাম| তারা ছিল মন্দিরে ঢোকবার জায়গাটাতে| কিন্তু তারা ভুল দিকে মুখ ফিরে ছিল! পূর্বদিকে উদিত সূর্য়্য়ের উপাসনা করবার সময় তাদের পশ্চাদ্দেশ আমার মন্দিরের দিকে ফেরানো ছিল| 17 তখন ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি এসব দেখতে পাচ্ছো? তারা এই সমস্ত নোংরা জিনিষ এখানে করছে এটা কি ভালো? এই শহর হিংসাত্মক ঘটনায পূর্ণ| আর আমাকে বিরক্ত করে তুলতে তারা সর্বদাই ব্যস্ত| দেখ, ওরা আমায় অশ্লীল ইঙ্গিত করছে| 18 আমি তাদের আমার রোধ কি তা দেখাব| তাদের প্রতি দয়া করব না| তারা আমার কাছে আর্তনাদ করবে কিন্তু আমি শুনতে অস্বীকার করব!”
1 তখন আমি শুনতে পেলাম যে, যে নেতারা শহরকে শাস্তি দেবার দায়িত্বে ছিল, ঈশ্বর তাদের ডাকছেন| প্রত্যেক নেতার হাতে ছিল তার নিজস্ব মারণাস্ত্র| 2 তারপর আমি উচ্চতর ফটক থেকে ছয়জনকে হাঁটতে দেখলাম| এই ফটকটি ছিল উত্তরমুখী| প্রত্যেকের হাতে ছিল তার নিজস্ব মারাত্মক অস্ত্র| এক জন মানুষের পরনে ছিল মসিনার কাপড়| তার কোমরে গোঁজা ছিল একটি লেখনী ও কালির একটি দোয়াত| ঐ লোকরা মন্দিরের পিতলের বেদীর কাছে গিয়ে সেখানে দাঁড়াল| 3 তারপর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা করূব দূতগণের মধ্য থেকে উঠে এল| সেখানেই তিনি ছিলেন| তারপর সেই গৌরব পরাক্রম মন্দিরের দরজা পর্য়ন্ত গেল| চৌকাঠের কাছে গিয়েই তিনি থামলেন| তারপর প্রভুর মহিমা মসিনা কাপড় পরা এবং লেখনী ও দোয়াত কোমরে বাঁধা লোকটিকে ডাকলেন| 4 তখন প্রভু (মহিমা) তাকে বললেন, “জেরুশালেম শহরের মধ্য দিয়ে যাও| সেই সব লোক যারা শহরের লোকদের ভয়ঙ্কর কাজকর্মের জন্য দুঃখ করে এবং মনমরা তাদের প্রত্যেকের কপালে দাগ দাও|” 5 তারপর আমি শুনলাম ঈশ্বর অন্য বাকী লোকেদের বলছেন, “আমি চাই তোমরা প্রথম মানুষটিকে অনুসরণ কর| যে সব ব্যক্তির কপালে চিহ্ন নেই তাদের তোমরা অবশ্যই হত্যা করো| তারা প্রবীণ হোক, যুবক বা যুবতী, শিশু বা মায়েরা হোক তাতে কিছু আসে যায় না| কোন রকম দয়া দেখিও না| কোন ব্যক্তির জন্য দুঃখ বোধ করো না| এখানে আমার মন্দির থেকেই শুরু কর|” তাই তারা মন্দিরের সামনে যে প্রবীণরা ছিল তাদের দিয়েই শুরু করল| 6 7 ঈশ্বর তাদের বললেন, “এই মন্দির অশুচি কর| এর প্রাঙ্গন মৃতদেহ দিয়ে পূর্ণ কর! এখনই যাও!” তাই তারা গিয়ে শহরের লোকদের হত্যা করল| 8 এই লোকরা যখন শহরে গিয়ে লোক হত্যা করছিল সে সময় আমি সেখানেই ছিলাম| আমি মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে কেঁদে বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু, জেরুশালেমের প্রতি তোমার রোধ প্রকাশ করতে কি তুমি ইস্রায়েলের অবশিষ্ট সবাইকেই হত্যা করবে?” 9 ঈশ্বর আমাকে বললেন, “ইস্রায়েল ও যিহূদা পরিবার বহু জঘন্য পাপ কাজ করেছে| দেশের সর্বত্র, লোকদের হত্যা করা হয়েছে| আর শহর অপরাধে পূর্ণ হয়ে গেছে! কেন? কারণ লোকরা নিজেদের মধ্যেই বলাবলি করে, ‘প্রভু এই শহর ত্যাগ করেছেন এবং চলে গেছেন| তাই আমরা কি করছি তা তিনি দেখতে পাবেন না|’ 10 আর আমিও কোন দয়া দেখাব না| এই লোকদের জন্য আমি অনুশোচনাও করব না| তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর ওসব এনেছে| আমি কেবল ঐ লোকদের তাদের পাওনা শাস্তি দিচ্ছি|” 11 তারপর সেই মসিনা কাপড় পরা আর লেখনী ও কালির দোয়াত কোমরে বাঁধা লোকটা বললেন, “আপনি যা আজ্ঞা করেছেন তা আমি করেছি|”
1 তারপর আমি করূব দূতদের মাথার ওপরের পাত্রের দিকে তাকালাম| পাত্রটিকে নীলকান্ত মণির মত পরিষ্কার নীল দেখাচ্ছিল| আর সেই পাত্রের ওপরে সিংহাসনের মত কিছু একটা দেখতে পেলাম| 2 তখন যে ব্যক্তিটি সিংহাসনে বসেছিলেন তিনি মসিনা কাপড় পরা মানুষটিকে বললেন, “করূব দূতের নীচে যে চাকাগুলি রয়েছে তার মধ্যে ঢুকে যাও| করূব দূতদের মাঝখান থেকে মুঠো করে জ্বলন্ত কযলা তুলে নিয়ে তা জেরুশালেম শহরের উপর ছুঁড়ে দাও|”মানুষটি আমায় অতিএম করে গেলেন| 3 মানুষটি যখন তাদের দিকে হেঁটে গেলেন সে সময় করূবদূতগণ মন্দিরের দক্ষিণ দিকে দাঁড়িয়েছিলেন| মেঘে ভিতরের প্রাঙ্গণ পরিপূর্ণ করল| 4 তারপর প্রভুর মহিমা মন্দিরের দরজার চৌকাঠের কাছে স্থিত করূব দূতেদের মধ্যে থেকে উঠে এল| আর ঐ মেঘ মন্দির পূর্ণ করল আর প্রভুর গৌরবের উজ্জ্ব্বল আলো সমস্ত প্রাঙ্গণ পূর্ণ করল| 5 করূব দূতেদের ডানা ঝাপটানোর শব্দ এমনকি একেবারে বাইরের প্রাঙ্গনেও শোনা যেতে লাগল| সেই শব্দের প্রচণ্ড আওয়াজ- যেমন ঈশ্বর সর্বশক্তিমান বজ্রের রবে কথা বলেন| 6 ঈশ্বর, সেই মসিনা কাপড় পরা লোকটিকে এক আজ্ঞা দিয়েছিলেন| ঈশ্বর বলেছিলেন চাকাগুলির মধ্যে করূব দূতদের মাঝখানে গিয়ে কিছু গরম কযলা নিয়ে আসতে| তাই লোকটি সেখানে গিয়ে চাকার পাশে দাঁড়ালেন| 7 করূব দূতদের এক জন হাত বাড়িয়ে তাদের মধ্যের অঞ্চল থেকে উত্তপ্ত কযলা তুলে নিলেন| তারপর তা সে মানুষটির হাতে ঢেলে দিলেন| আর মানুষটি স্থান ত্যাগ করলেন| 8 (করূব দূতটির ডানার তলায় মানুষের হাতের মতোই দেখতে কিছু ছিল|) 9 তারপর আমি সেখানে চারটি চাকা দেখতে পেলাম| প্রতিটি করূব দূতের পাশে একটি করে চাকা| চাকাগুলিকে স্বচ্ছ হলুদ রঙের বৈদুর্য়্য়মণির মতো দেখাচ্ছিল| 10 চারটি চাকা ছিল এবং তাদের প্রত্যেকেরই এক রূপ| দেখে মনে হচ্ছিল যেন চাকার মধ্যে চাকা রয়েছে| 11 তারা গমন করার সময় যে কোন দিকে যেতে পারত| কিন্তু গমন করার সময় করূব দূতেরা মুখ ঘোরাত না| তাদের মাথা যে দিকে মুখ করে থাকত সেই দিকেই যেত| চলার সময় পাশে ফিরত না| 12 তাদের দেহের সর্বত্র চোখে পূর্ণ| তাদের পিঠে, হাতে, ডানায ও চাকায় চোখে পূর্ণ| হ্যাঁ, চার চাকাও চোখে পূর্ণ ছিল! 13 আমি শুনলাম সেই চাকাগুলিকে কেউ চিত্কার করে বলল, “ঘূর্য়্ণমান চাকা|” 14 প্রত্যেক করূব দূতের চারটি করে মুখ ছিল| প্রথম মুখটি করূবের মুখ| দ্বিতীয়টি মানুষের মুখ| তৃতীয়টি সিংহের মুখ, আর চতুর্থটি ঈগলের মুখ| তখন আমি বুঝলাম দর্শনে যে পশুদের আমি কবার নদীর ধারে দেখেছিলাম তা করূব দূত ছিল!তারপর সেই করূব দূতরা আকাশে উঠল| 15 16 আর চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে উঠল| যখন সেই করূব দূতগুলি ডানা তুলে বাতাসে উড়ল তখন চাকাগুলি পাশেও ঘুরাত না| 17 করূব দূতরা আকাশে উড়লে চাকাগুলিও তার সঙ্গে যেত| করূব দূতেরা স্থির হয়ে দাঁড়ালে চাকাগুলিও স্থির হত| কারণ ঐ চাকাগুলিতে সেই প্রাণীদের আত্মা ছিল| 18 তারপর প্রভুর মহিমা মন্দিরের চৌকাঠ থেকে উঠে এসে করূব দূতদের উপরে অবস্থান করল| 19 করূব দূতরা ডানা তুলে আকাশে উড়ে গেল| আমি তাদের মন্দির ত্যাগ করে চলে যেতে দেখলাম| চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে গেল| তারপর তারা প্রভুর মন্দিরের পূর্বদিকের দরজায এসে থামল| ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা শূন্যে তাদের উপরে ছিল| 20 তখন আমি কবার নদীর ধারে দেখা দর্শনের সেই পশুদের কথা স্মরণ করলাম; যারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমার নীচে ছিল| আর বুঝতে পারলাম যে তারা করূব দূত ছিল| 21 অর্থাত্ প্রত্যেক পশুর চারটি করে মুখ, চারটি ডানা আর ডানার তলায় মানুষের হাতের মত দেখতে হাত ছিল| 22 করূব দূতগুলির মুখগুলি ছিল দর্শনে কবার নদীর ধারে দেখা চারটি পশুর মুখের মত| আর তারা যে দিকে যেত সোজা সেই দিকেই তাকাত|
1 তারপর আত্মা আমাকে প্রভুর মন্দিরের পূর্বদিকের দরজায বয়ে নিয়ে গেল| এই দরজার মুখ পূর্বদিকে যেদিকে সূর্য় ওঠে সেই দরজার মুখে আমি 25 জন পুরুষ দেখতে পেলাম| অসূরের পুত্র যাসনিয় এই সব লোকদের সঙ্গে ছিল| বনায়ের পুত্র প্রটিয সেখানে ছিল| এই দুই জন ছিল লোকদের অধ্যক্ষ| 2 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, এরাই সেই লোক যারা এই শহরের মধ্যে মন্দ পরিকল্পনাগুলি করছে| তারা সব সময়েই লোকদের মন্দ কাজ করতে বলে| 3 এই লোকেরা বলে, ‘আমরা খুব শীঘ্রই আমাদের বাড়ীঘর বানাব| আমরা হলাম রান্নার হাঁড়ির ভেতর মাংসের মতন|’ 4 তাই তুমি অবশ্যই আমার হয়ে লোকেদের কাছে বলবে| মনুষ্যসন্তান, যাও লোকেদের কাছে গিয়ে ভাব্বাণী কর|” 5 তখন প্রভুর আত্মা আমার কাছে এল| তিনি আমায় বললেন, “তাদের বল প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ইস্রায়েলের গৃহ, তুমি বড় বড় পরিকল্পনা করছ| কিন্তু আমি জানি তুমি কি চিন্তা করছ| 6 এই শহরে তুমি অনেক লোক হত্যা করেছ| শহরের রাস্তা মৃতদেহে ভরিয়ে দিয়েছ| 7 এখন প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘ঐ মৃতদেহরা মাংস আর শহরটা পাত্র| কিন্তু নবূখদ্নিত্সর তোমাদের এর মধ্যে থেকে বের করে আনা হবে! 8 তোমরা তরবারির ভয়ে ভীত| কিন্তু আমি আর কারো নয়, শুধু তোমার বিরুদ্ধেই তরবারিটি আনছি|”‘ প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 9 ঈশ্বর আরও বললেন, “আমি তোমাদের শহরের বাইরে নিয়ে যাব| আর বিদেশীদের হাতে তুলে দেব| আমি তোমাদের শাস্তি দেব!” 10 তোমরা তরবারির ঘাযে মারা যাবে| আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতে তোমাদের শাস্তি দেব, যেন তোমরা জান যে আমিই তোমাদের শাস্তি দিচ্ছি, আমিই প্রভু| 11 হ্যাঁ, এই জায়গা রান্নার পাত্র হয়ে উঠবে না| আর তোমরা তার মধ্যে পাক করা মাংস হবে না| আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতেই তোমাদের শাস্তি দেব| 12 তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| আমার আজ্ঞা তোমরা লঙঘন করেছিলে| তোমরা আমার পথ অনুসরণ করনি| পরিবর্ত্তে, তোমরা তোমাদের চার দিকের জাতিদের পথই অনুসরণ করেছিলে!” 13 আমি যেই ঈশ্বরের কথা বলা শেষ করলাম, বনায়ের পুত্র প্লটিয মারা গেল| আমি মাটিতে পড়ে গেলাম| উপুড় হয়ে মাটিতে মুখ ঠেকিযে জোরে কেঁদে উঠে আমি বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু, আপনি কি অবশিষ্ট ইস্রায়েলীয়দের সবাইকেই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবেন?” 14 কিন্তু তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 15 “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের পরিবারগুলি অর্থাত্ তোমার ভাযেদের, যারা ইস্রায়েল দেশটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল তাদের স্মরণ কর| কিন্তু এখন জেরুশালেমের অধিবাসীরা বলছে, ‘প্রভুর কাছ থেকে তারা বহু দূরে চলে গিয়েছিল| এই দেশ আমাদের দেওয়া হয়েছিল- এটা আমাদেরই!’ 16 “তাই ঐ লোকদের এই বিষয়গুলি বল: প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘এটা সত্য যে আমি আমার প্রজাদের দূরের দেশে যেতে বাধ্য করেছিলাম| আমিই তাদের বহু দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম| কিন্তু অল্প সময়ের জন্য ঐসব দেশে আমিই তাদের মন্দির হব| 17 কিন্তু তুমি ঐসব লোকদের অবশ্যই বলবে যে প্রভু আমার সদাপ্রভু তাদের ফিরিয়ে আনবেন| আমি তোমাদের বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি| কিন্তু আমি তোমাদের আবার এক জায়গায় সংগ্রহ করব এবং ঐসব জাতির মধ্যে থেকে ফিরিয়ে আনব| ইস্রায়েলের ভূমি আবার তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দেব! 18 আর আমার প্রজারা ফিরে এলে তারা এখানে এখন যে সব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তি রয়েছে সে সব ধ্বংস করবে| 19 আমি তাদের একত্র করব| আমি তাদের নতুন আত্মা দেব| আমি তাদের পাথরের হৃদয় সরিয়ে সেখানে প্রকৃত হৃদয় স্থাপন করব| 20 তখন তারা আমার বিধিগুলি পালন করবে| তারা আমার আজ্ঞাগুলি পালন করবে| আমি তাদের যা বলব তারা তাই করবে| তারা প্রকৃতই আমার লোক হবে, আর আমি তাদের ঈশ্বর হব|”‘ 21 তখন ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু এখন তাদের মন অধিকার করে আছে ঐসব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তিরা| আর ঐ লোকরা যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য অবশ্যই আমি তাদের শাস্তি দেব|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই ঐসব কথা বলেছেন| 22 তারপর করূব দূতরা তাদের ডানা ওঠাল আর আকাশে উড়ে গেল| চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে গেল| আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা তাদের ওপরে ছিল| 23 পরে প্রভুর মহিমা নগরের মাঝখান থেকে উঠে গিয়ে নগরের পূর্বদিকে পাহাড়ের ওপরে গিয়ে থেমে গেল| 24 তারপর আত্মাটি আমায় তুলে নিয়ে আবার বাবিলনে সেই সব লোকদের কাছে, যারা ইস্রায়েল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, সেখানে ফিরিয়ে আনল| আমি ঐসব ঈশ্বরীয দর্শনে দেখলাম| তারপর যাকে আমি আমার দর্শনে দেখেছিলাম তিনি শূন্যে উঠে চলে গেলেন| 25 তখন আমি নির্বাসনে যারা ছিলেন তাদের কাছে প্রভু আমায় যা যা দেখিয়েছিলেন তা বললাম|
1 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, তুমি বিদ্রোহীদের মধ্যে বাস করছ! তারা সব সময়ই আমার বিরুদ্ধাচরণ করে| আমি তাদের প্রতি যা করেছি তা দেখার চোখ তাদের রয়েছে, কিন্তু তারা সে সব দেখবে না| আমি তাদের যা বলেছি তা শোনবার কান তাদের রয়েছে কিন্তু তারা আমার আদেশ শুনবে না| কারণ তারা বিদ্রোহী| 3 তাই, মনুষ্যসন্তান, তোমার জিনিসপত্র গোটাও| এমন অভিনয় কর যেন তুমি বহুদূর দেশে যাচ্ছ| দেখ, লোকে যেন তোমাকে তা করতে দেখে| হয়ত তারা তোমায় দেখবে কিন্তু তারা বিদ্রোহী| 4 “দিনের বেলায় তোমার জিনিসপত্র বাইরে বের করে এনো যাতে লোকে দেখতে পায়| তারপর বিকেলে এমন অভিনয় কর যেন নির্বাসিত হয়ে বহুদূর দেশে চলে যাচ্ছ| 5 লোকরা যখন দেখছে সে সময় দেওয়ালে একটা গর্ত কর আর সেই গর্ত দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাও| 6 রাতে সেই জিনিসপত্র কাঁধে করে চলে যাও| মুখ ঢেকে ফেল যাতে দেশটি দেখতে না পাও| কারণ আমি তোমাকে ইস্রায়েল পরিবারের কাছে উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করছি|” 7 তাই আমাকে যেরকম আজ্ঞা করা হয়েছিল আমি সেই মত কাজ করলাম| দিনের সময় আমি আমার জিনিসপত্র তুলে নিয়ে এমন অভিনয় করলাম যেন বহু দূরের দেশে চলে যাচ্ছি| সেই সন্ধ্যায় আমি হাত দিয়ে দেওয়ালে একটা গর্ত করলাম| রাতের বেলায় আমি জিনিসপত্র ঘাড়ে করে স্থান ত্যাগ করলাম| আমি সব লোকের সামনেই তা করলাম| 8 পরের দিন সকালে প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 9 “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি করছ তা কি ঐ বিদ্রোহী ইস্রায়েল সন্তানেরা জিজ্ঞাসা করেছে! 10 তাদের বল যে প্রভু, তাদের সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন| এই বার্তাটি জেরুশালেমের নেতাদের জন্য এবং ইস্রায়েলে বাসকারী সমস্ত লোকেদের জন্য| 11 তাদের বল, ‘আমি তোমাদের সকলের সামনে এক উদাহরণস্বরূপ| আমি যা করেছি তা সত্যিই তোমাদের প্রতি ঘটবে| বন্দী হিসাবে সত্যিই তোমাদের দূর দেশে যেতে বাধ্য করা হবে| 12 তোমাদের নেতা তার কাঁধে তার তল্পিগুলো রাখবে| সে রাতের বেলায় দেওয়ালে একটি গর্ত করে পালিয়ে যাবে| সে তার মুখ ঢাকবে যাতে লোকে তাকে চিনতে না পারে| সে চোখে দেখতে পাবে না সে কোথায় যাচ্ছে| 13 আমি তাকে ধরব| সে আমার ফাঁদে ধরা পড়বে| আর আমি তাকে বাবিলে কল্দীযদের দেশে নিয়ে আসব| শএুরা তার চোখ দুটো উপড়ে নেবে| তাই সে দেখতে পাবে না কোথায় চলেছে| সে বাবিলে মারা যাবে| 14 আমি রাজার লোকদের ইস্রায়েলের চারধারের অন্যান্য দেশগুলিতে থাকতে বাধ্য করব| আমি তার সৈন্যদের বাতাসে ছড়িয়ে দেব আর শএু সেনারা তাদের পেছনে ধাওযা করবে| 15 তখন লোকে জানবে যে আমিই প্রভু| তারা জানবে যে আমিই তাদের অন্য দেশে যেতে বাধ্য করেছিলাম| 16 “কিন্তু তবুও আমি তাদের মধ্যে কিছু লোককে জীবিত রাখব| কেউ কেউ প্লেগের হাত থেকে রক্ষা পাবে| কিছু লোক অনাহারে মারা যাবে না| কেউ বা আবার যুদ্ধে বেঁচে যাবে| আমি তাদের বাঁচাব যাতে তারা অন্যদের বলতে পারে তারা আমার বিরুদ্ধে কি ভয়ঙ্কর কাজ করেছিল| আর শুধুমাত্র তখনই তারা জানবে যে আমিই প্রভু|” 17 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 18 “মনুষ্যসন্তান, এমন অভিনয় কর যেন তুমি ভীষণ ভীত| তোমার খাদ্য আহার করার সময় ভয়ে কাঁপবে এবং উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত অবস্থায় জল পান করবে|” 19 তুমি সাধারণ লোকদের এসব অবশ্যই বলবে| বলবে, ‘প্রভু আমাদের সদাপ্রভু জেরুশালেমে ও ইস্রায়েলের অন্যান্য অংশে বাসকারী লোকেদের বলেছেন| তোমরা তোমাদের খাদ্য ভোজন করার সময় খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে| জল পান করার সময় ভীত হবে| কারণ তোমার দেশের সব কিছুই ধ্বংস করা হবে| সেখানে বসবাসকারী সবার প্রতিই শএুরা অত্যন্ত নিষ্ঠুর হবে| 20 তোমাদের শহরে এখন অনেকেই বাস করে, কিন্তু ঐসব শহর ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| তোমাদের সমস্ত দেশকেই ধ্বংস করা হবে| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|” 21 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 22 “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলে লোকে কেন এই ছড়াটি বলে:দুর্দশা আসবে না চট করে,দর্শনগুলো ফলবে না রে| 23 “ঐ লোকদের বলো যে প্রভু তাদের ঈশ্বর তাদের ছড়াটি থামিয়ে দেবেন| ইস্রায়েল সম্বন্ধে আর তারা ওসব বলবে না, কিন্তু এখন এই ছড়াটি আবৃত্তি করবে:দুর্দশা আসবে শীঘ্রই|দর্শনগুলো সব ফলবে ওরে| 24 “সত্যি সত্যিই ইস্রায়েলে আর কোন মিথ্যা দর্শন থাকবে না| আর কোন জাদুকর থাকবে না যারা মিথ্যা করে ভবিষ্যত্ সম্বন্ধে বলে| 25 কারণ আমিই প্রভু আমি যা বলতে চাই তা বলব, আর তাই ঘটবে| আর আমি সময় দীর্ঘ হতে দেব না| ঐসব দুর্ভোগ খুব শীঘ্রই আসছে তোমাদের জীবন কালেই| ওহে বিদ্রোহী বংশ আমি যখন কিছু বলি, তা ঘটে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন| 26 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন: 27 “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের লোকরা মনে করে যে সব দর্শন আমি তোমায় দিচ্ছি তা সুদূর ভবিষ্যতের| তারা মনে করে তুমি এমন বিষয়ে কথা বলছ যা এখন থেকে বহু বছর পরে ঘটবে| 28 তাই তুমি অবশ্যই তাদের এই সব কথা বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: আমি আর দেরী করব না| যদি আমি কিছু ঘটবে বলে বলি তবে তা ঘটবেই!”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন|
1 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, তুমি আমার হয়ে ইস্রায়েলের ভাব্বাদীদের অবশ্য এই কথা বলবে| এই সব ভাব্বাদীরা প্রকৃতপক্ষে আমার হয়ে কথা বলে না| এই সব ভাব্বাদীরা নিজেরা যা বলতে চায় তাই-ই বলে| তাই তুমি তাদের অবশ্যই এই কথা বোলো, ‘প্রভুর এই বার্তা শোন! 3 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন| ওহে মূর্খ ভাব্বাদীরা, তোমাদের প্রতি অমঙ্গল ঘটবে| তোমরা নিজের নিজের আত্মার অনুগমণ করছ| তোমরা দর্শনে প্রকৃতপক্ষে যা দেখছ তা লোকদের কাছে বলছ না|’ 4 “‘ইস্রায়েল তোমার ভাব্বাদীরা পোড়ো বাড়ীর মধ্যে দৌড়ে যাওয়া শিয়ালের মতো হবে| 5 তোমরা ভাঙ্গা প্রাচীরের কাছে সৈন্য মোতাযেন করনি| ইস্রায়েল পরিবারকে রক্ষা করতে প্রাচীর তৈরী করনি| তাই যখন প্রভুর কাছ থেকে শাস্তির দিন নেমে আসবে তোমরা যুদ্ধে হারবে| 6 “‘মিথ্যা ভাব্বাদীরা বলে তারা দর্শন দেখেছে| তারা তাদের জাদু করে মিথ্য়ে মিথ্য়ে ওসব ঘটবে বলে বলেছে| তারা বলে প্রভুই তাদের পাঠিয়েছেন- কিন্তু তা মিথ্যা কথা| তারা এখনই তাদের মিথ্যা কথা সফল হবে ভেবে বসে আছে| 7 “‘মিথ্যা ভাব্বাদীর দল, তোমাদের দেখা দর্শন সত্যি নয়| তোমরা তোমাদের জাদু ব্যবহার করে ভবিষ্যতে কি ঘটবে বলেছ| সব মিথ্য়ে কথা| তোমরা বলেছ প্রভুই ঐসব কথা বলেছেন| কিন্তু আমি তোমাদের কোন কথাই বলিনি!”‘ 8 তাই এখন প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, “তোমরা মিথ্য়ে কথা বলেছ| তোমাদের দেখা দর্শন সত্যি নয়| তাই আমি এখন তোমাদের বিরুদ্ধে!” প্রভু, আমার সদাপ্রভু এইগুলো বলেছেন| 9 প্রভু বলেন, “যে সব ভাব্বাদী মিথ্যা দর্শন দেখেছে ও মিথ্যা বলেছে আমি তাদের শাস্তি দেব| আমি তাদের আমার প্রজাদের মধ্য থেকে উচ্ছেদ করব| ইস্রায়েলের পরিবারের নামের তালিকায তাদের নাম থাকবে না| তারা কখনও ইস্রায়েল দেশে আর আসবে না| তখন তোমরা জানবে আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু! 10 “বার বার ঐসব ভাব্বাদীরা আমার প্রজাদের কাছে মিথ্যা বলেছে| ঐ ভাব্বাদীরা বলেছে শান্তি আসছে, কিন্তু শান্তি আসেনি| প্রাচীর মেরামত করে লোকদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত| কিন্তু তারা ভাঙ্গা প্রাচীরে কেবল চুনকাম করেছে| 11 ওদের বলো যে আমি শিলা ও প্রবল বৃষ্টি পাঠাব| বাতাস প্রবলভাবে বইবে আর ঘূর্ণিঝড় আসবে| তখন প্রাচীর ভেঙ্গে পড়বে| 12 প্রাচীর ভেঙ্গে পড়লে লোকে ভাব্বাদীদের জিজ্ঞেস করবে, ‘চুনকাম করা দেওয়ালের কি হল?”‘ 13 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমি রোধন্বত এবং তোমাদের বিরুদ্ধে ঝড় পাঠাব| রোধ আমি প্রবল বৃষ্টি পাঠাব| এোধ আমি আকাশ থেকে শিলা বৃষ্টি পাঠাব এবং তোমাদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করব| 14 তোমরা দেওয়ালে চুনকাম করেছ কিন্তু আমি সমস্ত দেওয়ালটাকেই ধ্বংস করব| আমি তা মাটিতে ফেলে দেব| সেই প্রাচীর তোমাদের ওপরেই পড়বে| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| 15 আমি সেই প্রাচীরের প্রতি ও যে লোকরা তার ওপর প্রলেপ লাগিয়েছে, তাদের প্রতি আমার রোধ প্রকাশ শেষ করব| সেখানে আমি বলব, ‘দেওয়ালও নেই আর তার ওপর প্রলেপ লাগানোরও কেউ নেই|’ 16 “ইস্রায়েলের মিথ্যা ভাব্বাদীদের প্রতি ঐ সবকিছুই ঘটবে| ঐ ভাব্বাদীরা জেরুশালেমের লোকদের কাছে কথা বলে| ঐ ভাব্বাদীরা বলে শান্তি হবে কিন্তু শান্তি হয় না|” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন| 17 ঈশ্বর বলেছেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের ভাব্বাদিনীদের দিকে দেখ| ঐ সমস্ত ভাব্বাদিনীরা আমার হয়ে কথা বলে না| তারা নিজেরা যা চায় তাই বলে| তাই তুমি অবশ্যই আমার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে| তুমি অবশ্যই এই সব কথা তাদের বলবে| 18 ‘প্রভু, আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন: ভাব্বাদিনীরা, তোমাদের প্রতি অমঙ্গল ঘটবে| লোকদের হাতে বাঁধার জন্য তোমরা কাপড়ের তাবিজ বানিয়েছ, লোকদের মাথায় বাঁধ্বার জন্য তোমরা একটি বিশেষ মাথার পাগড়ী তৈরী কর| তোমরা বলে থাক ঐসব জিনিসের যাদুর মত ক্ষমতা রয়েছে| যেন তোমরা অন্য লোকদের জীবন চালনা করতে পার| কেবল নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে তোমরা ঐসব লোকদের ফাঁদে ফেল! 19 তোমরা লোকদের ভাবতে শেখাও যে আমার আদৌ কোন গুরুত্ব নেই| কয়েক মুঠো বার্লি ও রুটির টুকরোর জন্য তোমরা আমাকে অসম্মান কর? তোমরা আমার প্রজাদের কাছে মিথ্যা বল আর তারাও মিথ্যা কথা শুনতে ভালোবাসে| যাদের বাঁচা উচিত তাদের তোমরা মেরে ফেল আর যাদের মৃত্যু হওয়া উচিত্ তাদের তোমরা বাঁচাও| 20 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু তোমাদের এই কথা বলেন: তোমরা ঐসব কাপড়ের তাবিজ লোকদের ফাঁদে ফেলতে তৈরী করে থাকো| কিন্তু আমি তাদের মুক্ত করব| তোমাদের হাত থেকে ঐসব তাবিজ ছিঁড়ে নেব, আর লোকরা মুক্ত হবে| তারা ফাঁদ থেকে উড়ে যাওয়া পাখীর মত হবে! 21 আর আমি ঐসব মাথার আবরণ ছিঁড়ে তোমাদের হাত থেকে আমার প্রজাদের বাঁচাব| ঐ লোকরা তোমাদের ফাঁদ থেকে পালাবে আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| 22 “তোমরা ভাব্বাদীরা মিথ্যা কথা বল| তোমাদের মিথ্যা ভালো লোকদের আঘাত করে| ঐসব ভাল লোকেদের আমি আঘাত করতে চাইনি! তোমরা মন্দ লোকদের পক্ষ সমর্থন কর আর তাদের খারাপ কাজ করতে উত্সাহ দাও যাতে তাদের প্রাণহানি হয়| 23 তাই তোমরা আর অযথা দর্শন দেখবে না, আর জাদু করবে না| আমি আমার প্রজাদের তোমাদের হাত থেকে বাঁচাব| আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|”‘
1 ইস্রায়েলের কিছু প্রবীণ আমার কাছে এসে আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য বসল| 2 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 3 “মনুষ্যসন্তান, এই লোকদের হৃদয়ে এখনও তাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলো রয়েছে| যে জিনিষগুলি তাদের পাপের পথে নিয়ে গিয়েছিল সেগুলো তারা এখনও রেখে দিয়েছে| তারা এখনও ঐ মুর্ত্তিগুলোর পূজো করে| সুতরাং পরামর্শের জন্য কেন তারা আমার কাছে এসেছে? তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কি আমার উচিত্? না! 4 কিন্তু আমি তাদের একটি উত্তর দেব| আমি তাদের শাস্তি দেব| ঐসব লোকদের তুমি এসব কথাগুলো অবশ্যই বলবে: প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: যদি কোন ইস্রায়েলীয়, যে ঐ নোংরা মূর্ত্তিগুলি রাখে এবং পূজো করে, একজন ভাব্বাদীর কাছে যায় এবং আমার কাছ থেকে পরামর্শ নেবার কথা বলে, যদিও তারা ঐ নোংরা মূর্ত্তিগুলি রাখে তবু আমি তাদের উত্তর দেব| তাদের কাছে সেই সব নোংরা মূর্ত্তি থাকলেও আমি তাদের উত্তর দেব| 5 কারণ আমি তাদের হৃদয় স্পর্শ করতে চাই| আমি দেখাতে চাই যে আমি তাদের ভালোবাসি, যদিও তাদের নোংরা প্রতিমার জন্য তারা আমায় পরিত্যাগ করেছে|” 6 “তাই ইস্রায়েল পরিবারকে এই সব কথা বলো| তাদের বলো, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: তোমরা নোংরা মূর্ত্তি ছেড়ে আমার কাছে ফিরে এসো| ঐসব ভয়ঙ্কর মূর্ত্তি থেকে দূরে সরে যাও| 7 যদি কোন ইস্রায়েলীয়, অথবা ইস্রায়েলে বসবাসকারী আমাকে প্রশ্ন করবার জন্য কোন বিদেশী ভাব্বাদীর কাছে যায়, আমি তাকে উত্তর দেব| যদিও সে আমাকে ত্যাগ করে থাকে এবং যে সব নোংরা মূর্ত্তিগুলি তাকে পাপের পথে ঠেলে নিয়ে গিয়েছিল সেগুলি রাখে এবং পূজা করে তবুও আমি তাকে উত্তর দেব| আর আমি তাকে এই উত্তর দেব| 8 আমি সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াব| আমি তাকে ধ্বংস করব, অন্য লোকেদের কাছে সে উদাহরণ স্বরূপ হবে| লোকে তাকে দেখে হাসবে| আমি তাকে আমার প্রজাদের মধ্য থেকে উচ্ছেদ করব| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু! 9 আর যদি কোন ভাব্বাদী প্রতারিত হয় এবং অন্য কিছু বলে, তার মানে, আমি, প্রভু, ঐ ভাব্বাদীকে ঠকিয়েছি| আমি তাকে শাস্তি দেব| আমি তাকে ধ্বংস করব এবং আমি তাকে আমার প্রজা ইস্রায়েলের মধ্য থেকে সরিয়ে নেব| 10 তাই সেই পরামর্শ প্রার্থী প্রশ্নকারক ও উত্তরকারী ভাব্বাদী দুজনেই একই শাস্তি পাবে| 11 আমি এটা করব যাতে ইস্রায়েলীয়রা আমাকে আর ছেড়ে না যায়| আর তাহলে আমার লোকরা তাদের পাপে আর নোংরা হবে না| তখন তারা আমার বিশেষ লোক হবে| আর আমি তাদের ঈশ্বর হব|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন| 12 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন: 13 “মনুষ্যসন্তান, যে জাতিই আমাকে পরিত্যাগ করবে ও আমার বিরুদ্ধে পাপ করবে তাকেই আমি শাস্তি দেব| আমি তাদের খাদ্যের য়োগান বন্ধ করে দেব| আমি দুর্ভিক্ষ এনে সেই দেশ থেকে লোকজন ও পশুদেরও দূর করে দিতে পারি|” 14 যদিও নোহ, দানিয়েল ও ইযোব সেখানে বাস করেছিল তবু আমি সেই দেশকে শাস্তি দেব| ঐসব মানুষ তাদের ধার্মিকতার জন্য প্রাণে বেঁচ্ছেিল, কিন্তু তারা সমস্ত দেশ বাঁচাতে পারেনি|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব বলেছিলেন| 15 ঈশ্বর বলেন, “অথবা আমি বন্য জন্তুদের সেই দেশে পাঠাতে পারি আর তারা দেশের সব লোক হত্যা করতে পারে| ফলে কোন লোক বন্য জন্তুদের জন্য সেই দেশের মধ্য দিয়ে যাবে না|” 16 যদি নোহ, দানিয়েল ও ইযোব সেখানে বাস করত তবে আমি ওই তিনজন ধার্মিককে বাঁচাতাম| ঐ তিন ব্যক্তি তাদের নিজের প্রাণ বাঁচাত| কিন্তু আমার জীবনের দিব্য তারা অন্য লোকদের প্রাণ বাঁচাতে পারত না| তাদের নিজের ছেলেমেয়েদেরও না! সেই মন্দ দেশ ধ্বংস হতোই|” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন| 17 ঈশ্বর বলেন, “অথবা আমি ঐ দেশের বিরুদ্ধে একটি শএুসেনা পাঠাতে পারি| ঐ শএুরা দেশটি ধ্বংস করবে| সেই দেশ থেকে আমি সমস্ত লোকজন ও পশু সরিয়ে দেব| 18 নোহ, দানিয়েল ও ইযোব সেখানে বাস করলে আমি ঐ তিন ধার্মিককে রক্ষা করতাম| ঐ তিনজন তাদের নিজের নিজের প্রাণ বাঁচাত কিন্তু আমার জীবনের দিব্য তারা অন্যদের প্রাণ বাঁচাতে পারত না| এমনকি তাদের ছেলেমেয়েদেরও না| সেই মন্দ দেশ ধ্বংস হোত|” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছিলেন| 19 ঈশ্বর বললেন, “অথবা আমি দেশের বিরুদ্ধে কোন রোগ পাঠাতে পারি| আমি ঐ লোকদের ওপর আমার রোধ ঢেলে দেব| আমি সমস্ত লোক ও পশু সেই দেশ থেকে দূর করব|” 20 যদি নোহ, দানিয়েল ও ইযোব সেখানে বাস করত, তবে আমি ঐ তিন জনকে বাঁচাতাম কারণ তারা ধার্মিক| ঐ তিনজন নিজের প্রাণ বাঁচাতে পারত| কিন্তু আমার জীবনের দিব্য তারা অন্য লোকেদের জীবন বাঁচাতে পারত না| এমনকি তাদের ছেলেমেয়েদেরও না|” আমার প্রভু সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছিলেন| 21 তখন প্রভু আমার সদাপ্রভু বললেন, “ভেবে দেখ তাহলে জেরুশালেমের পক্ষে তা কত অমঙ্গলজনক হবে: এই চারটি শাস্তির সব কটাই আমি তাদের বিরুদ্ধে পাঠাব| আমি ঐ শহরের বিরুদ্ধে সৈন্য, ক্ষুধা, রোগ ও বন্য পশু এই সব কটিই পাঠাব| সেই দেশ থেকে আমি লোকজন ও পশুপাখী উচ্ছেদ করব! 22 সেই দেশ থেকে কেউ কেউ পালাবে| তারা তাদের পুত্র, কন্যা নিয়ে তোমার কাছে সাহায্যের জন্য আসবে| তখন তুমি দেখতে পাবে যে ঐ লোকরা প্রকৃতপক্ষে কত মন্দ এবং জেরুশালেমের বিরুদ্ধে আমি যে সব অমঙ্গল এনেছি তা তোমার কাছে যথার্থ মনে হবে| 23 তুমি তাদের জীবনযাপন ও তাদের মন্দ কাজগুলি দেখতে পাবে| আর তখন তুমি বুঝবে যে আমি যথার্থ কারণেই ঐ লোকেদের শাস্তি দিয়েছি|” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন|
1 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন: 2 “মনুষ্যসন্তান, দ্রাক্ষালতার কাঠের খণ্ডগুলো বনের বৃক্ষের ছোট কাঁটা ডালের থেকে কোন অংশে উত্তম?” 3 দ্রাক্ষালতার সেই কাঠ কি কোন কিছু তৈরী করার জন্য ব্যবহার করা যায়? না! সেই কাঠ দিয়ে কি থালা ঝোলানোর জন্য কীলক তৈরী করা যায়? না! 4 লোকে সেই কাঠ কেবল জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে| কাঠগুলির কিছু কিছুর সামনে পিছনে আগুন ধরে| মাঝখানের অংশও আগুনে কালো হয়ে যায় কিন্তু কাঠিটি সম্পূর্ণরূপে পোড়ে না| সেই পোড়া কাঠ দিয়ে কি কিছু তৈরী করতে পারো? না! 5 যদি পোড়াবার আগে তা দিয়ে কোন কাজ না হল তবে এটা নিশ্চিত যে পোড়াবার পরেও তা কোন কাজে লাগবে না| তাই দ্রাক্ষালতার কাঠের টুকরোগুলো বনের বৃক্ষের কাঠের টুকরোর মতই| লোকরা সেই টুকরোগুলো আগুনে ফেলে দেয় আর আগুন তা পুড়িয়ে দেয়| সেইভাবেই, আমি জেরুশালেমে বাসকারী লোকদের আগুনে ছুঁড়ে ফেলব|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন| 6 7 “আমি ঐ লোকদের শাস্তি দেব| কিন্তু কিছু লোক সেই লাঠির মত হবে যা সম্পূর্ণ দহয় না- তাদের শাস্তি হলেও তারা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হবে না| তোমরা দেখবে যে আমি ঐ লোকেদের শাস্তি দিয়েছি, আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|” 8 আমি ঐ দেশ ধ্বংস করব কারণ লোকরা আমায় পরিত্যাগ করেছে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এসব কথা বলেছেন|
1 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন: 2 “মনুষ্যসন্তান, জেরুশালেমের লোকরা যে সমস্ত ঘৃণিত কাজ করেছে সে সম্বন্ধে তাদের বল| 3 তুমি অবশ্যই বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু জেরুশালেমকে এই সব কথা বলেন: তোমার দিকে দেখ| তুমি জন্মেছিলে কনানে| তোমার বাবা ছিলেন ইমোরীয়, তোমার মা হিত্তীয়া| 4 জেরুশালেম যে দিন তোমার জন্ম হয়, তোমার নাড়ি কাটার জন্য কোন জায়গা ছিল না| কেউ তোমার গায়ে লবণ ছড়িয়ে তোমাকে পরিষ্কার করার জন্য স্নান করায় নি| কেউ তোমায় কাপড়ে মোড়াযনি| 5 জেরুশালেম, তুমি সম্পূর্ণ একা ছিলে| কেউ তোমার জন্য দুঃখ বোধ করেনি, তোমার যত্নও নেযনি| জেরুশালেম তোমার জন্মদিনে, তোমার পিতামাতা তোমাকে ক্ষেতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল| তারা এরকম করেছিল কারণ তারা তোমাকে ঘৃণা করত| 6 “তখন আমি (ঈশ্বর) সেখান দিয়ে যাচ্ছিলাম| আমি তোমায় রক্তের মধ্যে ছটফট করতে দেখলাম| তুমি রক্তে ঢাকা ছিলে কিন্তু আমি বললাম, “বাঁচ!” হ্যাঁ, তুমি রক্তে ঢাকা ছিলে কিন্তু আমি বললাম, “বাঁচ!” 7 আমি তোমাকে মাঠের গাছের মত বেড়ে উঠতে সাহায্য করলাম| তুমি বাড়লে, বেড়ে উঠে একজন যুবতী হলে: তোমার মাসিক হতে লাগল, স্তন দুটি বেড়ে উঠল, চুল বড় হল| কেউ তোমার প্রতি স্নেহভরে তাকিযে তোমার প্রতি মাযা করে তোমার কোন যত্ন নেযনি| কিন্তু তবুও তুমি উলঙ্গ ও ব্বিস্ত্রা ছিলে| 8 আমি তোমার দিকে তাকিযে দেখলাম, তোমাকে প্রেম করবার সময় হয়েছে| তাই আমি তোমার ওপর আমার কাপড় বিছালাম এবং তোমার উলঙ্গতা আবৃত করলাম| তোমাকে বিয়ে করার প্রতিজ্ঞাও করলাম| তোমার সঙ্গে বিয়ের চুক্তিও হল, আর তুমি আমার হলে|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এসব বলেছেন| 9 “‘আমি তোমায় জলে স্নান করালাম| তোমার রক্ত ধুলাম ও তোমার গায়ে তেল মালিশ করলাম| 10 তোমায় সুন্দর পোশাক ও পায়ে চামড়ার জুতো পরালাম| আমি তোমার মাথায় মসিনার পট্টি ও সিল্কের মাথা ঢাকা দিলাম| 11 তারপর তোমায় কিছু অলঙ্কার দিলাম, তোমার হাতে বালা ও গলায় হার দিলাম| 12 তোমার নাকে দিলাম নথ, কানে দুল, আর সুন্দর মুকুটও পরতে দিলাম| 13 তোমায় রূপো ও সোনার গহনায বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল; এমনকি তোমার মসিনা সিল্ক ও কাজ করা সজ্জায সাজলে| তুমি সব থেকে উত্তম খাবার খেতে| তুমি খুব সুন্দরী হয়ে উঠলে| তুমি রাণী হলে! 14 তোমার রূপের জন্য তুমি হলে বিখ্যাত কারণ আমিই তোমায় সুন্দরী করেছিলাম|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছিলেন| 15 ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু তুমি তোমার সৌন্দর্য়ের ওপর নির্ভর করতে শুরু করলে| তোমার সুনাম ব্যবহার করতে শুরু করলে ও আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হলে| যেই যায় তার সঙ্গে তুমি বেশ্যার মত ব্যবহার করলে| তুমি তাদের সকলের কাছে নিজেকে বিকিযে দিলে! 16 তুমি সেই সুন্দর কাপড় নিয়ে তোমার পূজার স্থান সাজালে| আর সেসব জায়গায় বেশ্যার মত আচরণ করলে| এরকম একটা ব্যাপার আগে কখনও হয়নি, পরেও আর কখনও হবে না| 17 তারপর আমি তোমায় যে সুন্দর অলঙ্কার দিয়েছিলাম তা তুমি নিলে| তারপর সেই রূপো ও সোনা ব্যবহার করে পুরুষ মানুষের মূর্ত্তি তৈরী করলে| তারপর তাদের সঙ্গেও য়ৌন কাজ করলে! 18 তারপর তুমি সেই সুন্দর কাপড় নিয়ে ঐসব মূর্ত্তির জন্য কাপড় বানালে| আমি তোমায় যে সব সুগন্ধি ও ধূনো দিয়েছিলাম তা তুমি ঐসব মূর্ত্তির সামনে রাখলে| 19 আমি তোমায় রুটি, মধু ও তেল দিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি ওগুলো ঐসব মূর্ত্তিদের নিবেদন করলে| তুমি সেসব তোমার মূর্ত্তিদের সন্তুষ্ট করবার জন্য উত্সর্গ করলে| হ্যাঁ, তুমি তাই করেছিলে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন| 20 ঈশ্বর বলেছেন, “তোমার এবং আমার সন্তান ছিল| কিন্তু তুমি আমার সন্তানদের নিয়ে গেলে| এমনকি তুমি তাদের হত্যা করলে এবং তাদের ঐসব মূর্ত্তিদের দিলে| ঐ সব মূর্ত্তিদের কাছে যাওয়া এবং তাদের সঙ্গে বেশ্যার মত আচরণ করবার চেয়েও এটা নিকৃষ্ট কাজ ছিল| 21 তুমি আমার সন্তানদের বলি দিতে তাদের এই মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে আগুনের মধ্য দিয়ে অতিএম করালে| 22 তুমি আমায় পরিত্যাগ করেছিলে এবং ঐসব ভয়ঙ্কর কাজ করেছিলে| তুমি কখনও তোমার য়ৌবনকাল স্মরণ করনি| স্মরণ করনি যে তোমাকে যখন আমি খুঁজে পেয়েছিলাম তখন তুমি রক্ত জড়ানো অবস্থায় উলঙ্গ হয়ে পড়েছিলে এবং শূণ্যে পা ছুঁড়ছিলে| 23 “ঐসব মন্দ কাজের পর, হায জেরুশালেম, এ তোমার পক্ষে ভীষণ অমঙ্গলদাযক হবে!” প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব কথা বলেছেন| 24 “ঐসব করার পর তুমি ঐ ঢিবি তৈরী করলে মূর্ত্তি পূজা করার জন্য| প্রতি রাস্তার কোণে ঐসব মূর্ত্তির উপাসনার স্থান তৈরী করলে| 25 প্রত্যেক রাস্তার মাথায় মাথায় ঐ ঢিবি তৈরী করলে| এই ভাবে তোমার সৌন্দর্য়্য় নষ্ট করলে| পথিককে ধরার জন্য তুমি তা ব্যবহার করলে| তুমি তোমার কাপড়ের নীচের ভাগ ওঠালে যাতে তোমার পা দেখা যায়; তারপর তুমি ঐসব লোকদের সঙ্গে বেশ্যার মত ব্যবহার করলে| 26 তারপর তুমি তোমার প্রতিবেশী মিশরে গেলে যার য়ৌনাঙ্গ বড় বড়| তারপর আমাকে রুদ্ধ করতে বহুবার তার সঙ্গে য়ৌন এযিা সম্পন্ন করলে| 27 তাই আমি তোমায় শাস্তি দিলাম! তোমার জমির অধিকারের অংশ নিয়ে নিলাম| আর তোমার শএু পলেষ্টীয়দের কন্যাদের শহর তোমাদের প্রতি তাদের যা ইচ্ছা তাই করতে দিলাম| এমনকি তারাও তোমাদের মন্দ কাজ শুনে চমকে উঠেছিল| 28 তারপর তুমি অশূরীয়দের সঙ্গে য়ৌন এযিা করতে গেলে| তোমার তৃপ্তি কিছুতেই হল না| 29 তাই তুমি কনানের দিকে ফিরলে, তারপর বাবিলের দিকে| তবু তোমার মন ভরল না| 30 তোমাকে দিয়ে ওসব কাজ করাবার জন্য তোমার হৃদয়কে অবশ্য দুর্বল হতে হবে| তুমি একজন দাপটমযী বেশ্যার মত আচরণ করলে|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই ঐসব কথা বলেছিলেন| 31 ঈশ্বর বলেছিলেন, “কিন্তু তুমি ঠিক একেবারে বেশ্যার মত ছিলে না| তুমি প্রত্যেক বড় রাস্তার মাথায় ও প্রত্যেক গলির কোণে উপাসনার জন্য ঢিবি তৈরী করেছিলে| ঐসব লোকের সাথে য়ৌনএযিা করেছিলে কিন্তু বেশ্যার মত তাদের কাছ থেকে বেতন নাও নি| 32 তুমি ব্যভিচারী নারী| তোমার স্বামীর সাথে নয় কিন্তু আগন্তুকদের সঙ্গেই শুতে তুমি ভালোবাসো| 33 বেশীর ভাগ বেশ্যাই পুরুষদের বেতন দিতে বাধ্য করে; কিন্তু তুমি তোমার প্রেমিকদের অর্থ দিলে| তুমি চারধারের সমস্ত লোকেদের বেতন দিলে তোমার সঙ্গে য়ৌন কাজের জন্য| 34 বেশীর ভাগ বেশ্যার বিপরীত তুমি| অধিকাংশ বেশ্যা পুরুষদের বেতন দিতে বাধ্য করে কিন্তু যে পুরুষেরা তোমার সঙ্গে য়ৌন এযিা করে তাদের তুমি বেতন দাও|” 35 বেশ্যা, প্রভুর বার্তা শোন| 36 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন: “তুমি তোমার টাকা খরচ করে তোমার প্রেমিকদের ও নোংরা দেবতাদের তোমার উলঙ্গতা দেখিয়েছ এবং তাদের সঙ্গে য়ৌন কাজ করেছ এবং তাদের তোমার ছেলে-মেয়েদের রক্ত দিয়েছ|” 37 তাই আমি তোমার সব প্রেমিকদের জড়ো করব| তুমি যাদের ভালোবেসেছিলে ও যাদের ঘৃণা করেছিলে সেই সমস্ত লোকদের আমি জড়ো করব আর তোমার উলঙ্গতা দেখাব| তারা তোমাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ দেখবে| 38 তারপর আমি তোমায় শাস্তি দেব| আমি তোমায় নরঘাতকের ও ব্যভিচারিনীর উপযুক্ত য়ৌন পাপের শাস্তি দেব| তুমি এক রোধন্বত ও ঈর্ষান্বিত স্বামীর দ্বারা শাস্তি পাবে| 39 ঐ সমস্ত প্রেমিকদের হাতে তোমাকে দেব| তারা তোমার ঢিবিগুলো ধ্বংস করবে| তোমার পূজার স্থানগুলো বালিয়ে দেবে| তারা তোমার কাপড় ছিঁড়ে ফেলে তোমার সুন্দর অলঙ্কার নিয়ে নেবে| তারা তোমায় নিঃস্ব ও উলঙ্গ করে ছেড়ে যাবে সেই অবস্থায় যে অবস্থায় আমি তোমায় পেয়েছিলাম| 40 তারা জনতার ভিড় জড়ো করে পাথর ছুঁড়ে তোমায় মেরে ফেলবে| তারপর তাদের তরবারি দ্বারা তোমাকে টুকরো টুকরো করে কাটবে| 41 তারা তোমার গৃহ (মন্দির) বালিয়ে দেবে| তোমায় শাস্তি দেবে যাতে অন্য মহিলারা তা দেখে| আমি তোমার বেশ্যার মত জীবনযাপন বন্ধ করব| তোমার প্রেমিকদের বেতন দেওয়া বন্ধ করব| 42 তারপর আমার রোধ ও ঈর্ষা নিবৃত্ত করব| আমি শান্ত হব| আর রোধ করব না| 43 কেন এই সব ঘটবে? কারণ তোমার য়ৌবনকালে কি ঘটেছিল তুমি তা মনে রাখোনি| তুমি ঐসব মন্দ কাজের দ্বারা আমাকে রুদ্ধ করেছিলে| তাই তোমার এই সব মন্দ কাজের জন্য আমাকে তোমায় শাস্তি দিতে হল| কিন্তু তুমি আরও ভযাবহ বিষয়ের পরিকল্পনা করলে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন| 44 “তোমার বিষয়ে যেসব লোকে কথা বলে তাদের আরেকটা কথা বলার থাকবে| তারা বলবে, ‘মা যেমন, মেয়ে তেমন|’ 45 তুমি তোমার মায়ের মেয়ে| তুমি তোমার স্বামী এবং সন্তানদের জন্য কোন চিন্তা করো না| তুমি তোমার বোনের মতোই| তোমরা দুজনেই তোমাদের স্বামী ও সন্তানদের ঘৃণা করতে| তোমরা তোমাদের মা বাবার মতোই| তোমার মা ছিলেন একজন হিত্তীয়া আর বাবা ছিলেন একজন ইমোরীয়| 46 তোমার বড় বোন শমরিয়া তার কন্যাদের নিয়ে তোমার উত্তর দিকে থাকত| আর তোমার ছোট বোন সদোম তার কন্যাদেরনিয়ে তোমার দক্ষিণে থাকত| 47 তারা যেসব ভয়ঙ্কর কাজ করেছিল তার সবগুলোই তোমরা করেছিলে| এমনকি তাদের থেকেও খারাপ কাজ করেছিলে! 48 আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু| আমার জীবনের দিব্য, তুমি ও তোমার কন্যারা যেসব মন্দ কাজ করেছে, তোমার বোন সদোম ও তার কন্যারাও তা করেনি|” 49 ঈশ্বর বলেছিলেন, “তোমার বোন সদোম ও তার কন্যারা গর্বিত হয়েছিল, পেট ভরে খেতে পেয়েছিল এবং তাদের হাতে প্রচুর সময় থাকত| তারা গরীব, অসহায় লোকদের সাহায্য করত না| 50 সদোম ও তার কন্যারা খুবই গর্বিত হয়ে উঠেছিল এবং আমার সামনে এবং ভয়ঙ্কর সব কাজ করতে শুরু করেছিল| আর আমি তাদের তা করতে দেখে তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম|” 51 ঈশ্বর বলেছেন, “আর তুমি যেসব মন্দ কাজ করেছ, শমরিয়া তার অর্ধেকও করেনি| তোমার ভয়ঙ্কর কাজগুলো শমরিয়ার কাজের চেয়ে অনেক বেশী খারাপ!” তোমার মন্দ কাজগুলি আসলে তোমার বোন শমরিয়াকে ভালো হিসেবে দেখায়| 52 তাই তুমি তোমার লজ্জা বইবে| তুমি তোমার বোনকে তোমার চেয়ে উত্তম প্রমাণ করেছ| তুমি ভযানক কাজ করেছ তাই তোমাকে অবশ্যই লজ্জা পেতে হবে|” 53 ঈশ্বর বলেছিলেন, “আমি সদোম ও তার চারপাশের শহর ধ্বংস করেছিলাম| আর তার পাশের শমরিয়াও ধ্বংস করেছিলাম| আর জেরুশালেম আমি তোমায় ধ্বংস করব| কিন্তু ঐ শহরগুলি আবার নির্মাণ করব| আর জেরুশালেম তোমাকেও আমি আবার নির্মাণ করব| 54 আমি তোমায় সান্তনা দেব| তখন তুমি তোমার করা ভযানক কাজগুলো মনে করবে আর লজ্জিত হবে| 55 তাই তোমাকে ও তোমার বোনকে আবার নতুন ভাবে গড়া হবে| সদোম ও তার চারপাশের শহরগুলিকে এবং শমরিয়া ও তার চারপাশের শহরগুলিকে এবং তোমাকে ও তোমার চারপাশের শহরগুলিকে আবার গড়া হবে|” 56 ঈশ্বর বলেছেন, “অতীতে তুমি গর্বিতমনা ছিলে ও তোমার বোন সদোমকে নিয়ে ঠাট্টা করতে কিন্তু তুমি আর তা করবে না| 57 শাস্তি পাবার আগে তুমি তা করেছিলে, তোমার প্রতিবেশীরা তোমাকে নিয়ে মজা করার আগে করেছিল| ইদোম ও পলেষ্টীয়ের কন্যারা, যারা তোমাকে ঘৃণা করে, তারা এখন তোমাকে নিয়ে ঠাট্টা করছে| 58 এখন তুমি অবশ্যই তোমার কৃত ভয়ঙ্কর কাজগুলির জন্য শাস্তি পাবে|” প্রভুই এই কথা বলেছেন| 59 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “তুমি আমার সঙ্গে যেরূপ ব্যবহার করেছ আমিও তোমার সঙ্গে সেইরূপ ব্যবহার করব! তুমি তোমার ব্বিাহের প্রতিশ্রুতি ভেঙ্গেছ| তুমি সেই কৃত চুক্তির সম্মান করনি| 60 কিন্তু তোমার য়ৌবনের সময় যে চুক্তি হয়েছিল তা আমি স্মরণে রেখেছি| তোমার সঙ্গে আমি এক চিরকালীন চুক্তি করেছিলাম! 61 আমি তোমার বোনদের, ছোট ও বড় উভয়কেই তোমার কাছে আনব এবং তাদের তোমার কন্যা করব| এটা চুক্তিতে ছিল না কিন্তু আমি এটা তোমার জন্য করব| তখন তুমি তোমার ভয়ঙ্কর কাজগুলি স্মরণ করবে আর লজ্জিত হবে| 62 সুতরাং আমি তোমার সাথে আমার চুক্তি করব আর তুমি জানবে যে আমিই প্রভু| 63 আমি তোমার প্রতি সদয হব সুতরাং তুমি আমায় মনে করবে, এবং তোমার মন্দ কাজের জন্য এত লজ্জিত হবে যে কিছুই বলতে পারবে না| কিন্তু আমি তোমাকে শুচি করব, তুমি আর কখনও লজ্জিত হবে না!” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেন|
1 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন: 2 “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবারকে এই গল্পটা বল| তাদের জিজ্ঞাসা কর এর অর্থ| 3 তাদের বল: এই হচ্ছে যা আমার প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন:একটা বড় ঈগল তার বড় বড় পাখা সমেত লিবানোনে এল| সেই ঈগলের ডানাগুলি বহু বর্ণে রঞ্জিত ছিল| 4 সেই ঈগল এরস গাছের মাথা ভেঙ্গে তা কনানে নিয়ে এল| সেই ঈগল ব্যবসাযীদের শহরে সেই শাখা রাখল| 5 তারপর ঈগলটি কনান থেকে কিছু বীজ নিয়ে এল| সে তাদের ভাল জমিতে রোপণ করল| সে তাদের একটি ভালো নদীর তীরে একটি বাইশী গাছের মত রোপন করল| উত্তম নদীর তীরে লাগাল| 6 বীজ থেকে চারা বেড়ে দ্রাক্ষালতা হল| সে এক উত্তম দ্রাক্ষালতা, যা খুব উঁচু ছিল না কিন্তু অনেক জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হল| লতাগুলো কাণ্ডে পরিণত হল| এর ডাল-পালাগুলো দীর্ঘ হল| 7 তারপর দীর্ঘ ডানা বিশিষ্ট আর একটি ঈগল সেই দ্রাক্ষালতা দেখতে পেল| এই ঈগলের দেহে ছিল অসংখ্য পালক| ঐ দ্রাক্ষালতা চাইল যেন নতুন ঈগলটি তার যত্ন নেয| তাই সে তার মূল এই ঈগলের দিকে বাড়তে দিল| তার শাখাগুলি সেই ঈগলের দিকে সোজা হয়ে গেল| যে জমিতে রোপণ করা হয়েছিল সেখান থেকে শাখাগুলো অনেক দূরে চলে গেল| দ্রাক্ষালতা চাইল যেন নতুন ঈগল তাতে জল সেচ করে| 8 সেই দ্রাক্ষালতা উত্তম ভূমিতে রোপণ করা হয়েছিল| প্রচুর জলের কাছে তা রোপণ করা হয়েছিল| তাতে শাখা ও ফল হতে পারত| তা উত্তম দ্রাক্ষালতা হতে পারত|” 9 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: “তোমার কি মনে হয় সেই গাছ কৃতকার্য় হবে? না! নতুন ঈগলটি তা মাটি থেকে তুলে ফেলবে| আর পাখিটি সেই গাছের মূলগুলো ভেঙ্গে ফেলবে| সে সব দ্রাক্ষাগুলো খেয়ে নেবে| তখন নতুন পাতাগুলি কুঁকড়ে যাবে| গাছটি খুবই দুর্বল হয়ে পড়বে| গাছটিকে শিকড় সমেত উপড়ে ফেলে দিতে বলবান বাহুর বা পরাক্রমী জাতির প্রয়োজন হবে না| 10 যেখানে রোপণ করা হয়েছে সেখানে কি গাছটি বাড়বে? না! পূর্বীয বাযু বইবে আর সেই গাছ শুকিয়ে মরে যাবে| যেখানে সেটা রোপন করা হয়েছিল, যেখানে পোঁতা হয়েছিল সেই খানেই এটা মারা যাবে|” 11 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 12 “এই ঘটনা ইস্রায়েলের লোকদের কাছে বুঝিযে বল: তারা সবসময় আমার বিরুদ্ধাচারী| তাদের এই কথাগুলি বল: বাবিলের রাজা জেরুশালেমে এসেছিলেন এবং রাজা ও অন্যান্য নেতাদের নিয়ে গেলেন| তিনি তাদের বাবিলে আনলেন| 13 তারপর নবূখদ্নিত্সর রাজপরিবারের এক জন লোকের সঙ্গে চুক্তি করলেন| রাজা জোর করে সেই লোকটিকে দিয়ে প্রতিশ্রুতি করালেন| তারপর ঐ লোকটি নবূখদ্নিত্সরের প্রতি বিশ্বস্ত হবার প্রতিশ্রুতি করল| তিনি তাঁকে যিহূদার রাজা করলেন| তারপর সে যিহূদা থেকে সমস্ত শক্তিশালী লোকদের বের করে দিল| 14 তাই যিহূদা দুর্বল রাজ্যে পরিণত হল, যা রাজা নবূখদ্নিত্সরের বিরুদ্ধে যেতে পারে না| নবূখদ্নিত্সর যিহূদার এই নূতন রাজার সঙ্গে যে চুক্তি করলেন লোকেরা তা মানতে বাধ্য হল| 15 কিন্তু, যাই হোক এই নতুন রাজা যেমন করে হোক্, বাবিলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হবার চেষ্টা করল| সে মিশরে সাহায্যের জন্য দূত পাঠাল| নতুন রাজা বহু ঘোড়া ও সৈন্য চাইল| এখন, তুমি কি মনে কর যে যিহূদার নতুন রাজা কৃতকার্য় হবে? তুমি কি মনে কর যে এই নতুন রাজা সেই চুক্তি ভেঙ্গে ফেলে শাস্তি এড়াতে যথেষ্ট শক্তিমান হবে?” 16 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য, সেই নতুন রাজা যে ব্যক্তি তাকে রাজা করেছে সে যেখানে থাকে, সেখানে মারা যাবে| কিন্তু সেই রাজা তার চুক্তি ভঙ্গ করেছে| এই নতুন রাজা তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে| 17 মিশরের রাজা যিহূদার রাজাকে বাঁচাতে সমর্থ হবেন না| তিনি অনেক সৈন্য পাঠালেও মিশরের মহাশক্তি যিহূদাকে বাঁচাতে পারবে না| বাবিলের রাজার সৈন্যরা শহর ঘিরে রেখে শহরটি অবরোধ করবে এবং শহরের প্রাচীরের ওপর পর্য়্য়ন্ত একটি মাটির রাস্তা বানিয়ে শহরে প্রবেশ করবে| অনেক লোকের মৃত্যুও হবে| 18 কিন্তু যিহূদার রাজা পালাবে না| কেন? কারণ সে তার চুক্তি উপেক্ষা করেছিল| সে তার চুক্তি ভঙ্গ করেছিল| 19 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই প্রতিশ্রুতি করেন: “আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি যে আমি যিহূদার রাজাকে শাস্তি দেব| কারণ সে আমাদের চুক্তি অগ্রাহ্য করেছিল| সে আমাদের চুক্তি ভেঙ্গেছিল| 20 আমি আমার ফাঁদ পাতব আর সে তাতে ধরা পড়বে| আর আমি তাকে বাবিলনে ফিরিয়ে এনে সেখানে তাকে শাস্তি দেব| সে আমার বিরুদ্ধে গেছে বলে আমি তাকে শাস্তি দেব| 21 আর আমি তার সৈন্য ধ্বংস করব| তার বীরদের ধ্বংস করব| আর অবশিষ্টদের হাওযাতে ছড়িয়ে দেব| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু আর আমিই এই সব বলেছিলাম|” 22 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব বলেছিলেন:“আমি লম্বা এরস গাছের এক শাখা নেব| সেই লম্বা গাছের থেকে এক ছোট শাখা নেব| আর আমি তা নিজে খুব উঁচু পর্বতে পুঁতব| 23 আমি নিজেই তা ইস্রায়েলের উঁচু পর্বতে রোপণ করব| সেই শাখা বৃক্ষে পরিণত হবে| তাতে শাখা উত্পন্ন হবে ও ফল ধরবে| আর তা সুন্দর এরস বৃক্ষ হয়ে উঠবে| তার শাখায় বহু পাখিরা এসে বসবে| তার শাখার ছায়ায় বহু পাখি বাস করবে| 24 “তখন অন্য গাছরা জানবে যে আমিই অন্যান্য উঁচু বৃক্ষদের মাটিতে ফেলেছি, আর ছোট গাছেদের বড় বৃক্ষে পরিণত করেছি| সবুজ গাছদের আমি শুকনো করেছি আর শুকনো গাছেদের সবুজ করেছি| আমিই প্রভু, যদি আমি কিছু করব বলে থাকি তবে তা করব!”
1 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন: 2 “তোমরা কেন ইস্রায়েল দেশটি সম্বন্ধে এই প্রবাদ বাক্য বল? তোমরা বলে থাক:পিতামাতারা টক দ্রাক্ষা ফল খেয়েছিল?কিন্তু তার ফলে সন্তানদের দাঁত টকেছে| 3 কিন্তু প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য যে ইস্রায়েলের লোকরা আর এই প্রবাদ বাক্যকে সত্য বলে মানবে না| 4 প্রত্যেক জনের সঙ্গে আমি একই রকম ব্যবহার করব| সে ব্যক্তি পিতা হোক অথবা পুত্রই হোক না কেন| যে ব্যক্তি পাপ করে সে মারা যাবে| 5 “যদি কেউ সত্ হয় তবে সে বাঁচবে| সেই ভাল লোক বলতে তাকেই বোঝাবে যে প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করবে| 6 প্রতিমাদের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত খাদ্যের ভাগ পাবার জন্য সে পর্বতে যায় না| ইস্রায়েলের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর কাছে সে প্রার্থনা করে না| প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে সে ব্যভিচার করে না| মাসিকের সময় সে তার স্ত্রীর সঙ্গে য়ৌন কাজে লিপ্ত হয় না| 7 সেই লোক অপরের অবস্থার সুযোগ নেয না| কেউ ধার চাইলে সে বন্ধক নিয়ে তাকে ধার দেয়| আর ধার শোধ করলে তাকে সেই বন্ধক ফিরিয়ে দেয়| সে ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেয়| বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেয়| 8 সে কাউকে টাকা ধার দিলে সুদ নেয না| সেই সত্ লোক খল হতে অস্বীকার করে| প্রতিটি ব্যক্তির সঙ্গে সে ন্যায্য আচরণ করে| ন্যায্যভাবে ঝগড়াঝাঁটি মিটিযে দেবার জন্য লোকে তার উপর নির্ভর করতে পারে| 9 সে আমার বিধিগুলি পালন করে| আমার সিদ্ধান্তগুলি সে চিন্তা করবে এবং ন্যায্য ও নির্ভরয়োগ্য হতে শিক্ষা করবে| সে সত্ লোক, তাই সে বাঁচবে| প্রভু, আমার সদাপ্রভু এইগুলো বলেছেন| 10 “কিন্তু সেই সত্ লোকের কোন পুত্র থাকতে পারে যে ঐ সত্ কাজের কোনটিই করেনি| সে চোর বা নরঘাতক হতে পারে| 11 অথবা সেই পুত্র এই মন্দ কাজগুলির কোন একটি করতে পারে যেমন মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত খাদ্য খেতে পর্বতে যাওয়া, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া, 12 গরীব অসহায় লোকের সঙ্গে অন্যায় ব্যবহার, অপরের অবস্থার সুযোগ নেওয়া, কেউ ধার শোধ করলে তার বন্ধক ফিরিয়ে না দেওয়া| সে মন্দ সন্তান নোংরা মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা জানাতে ও জঘন্য কাজ করতে পারে| 13 সেই দুষ্ট সন্তান সুদের লোভে ঋণ দিয়ে সুদ দিতে বাধ্য করতে পারে| সে ক্ষেত্রে সেই দুষ্ট পুত্র বাঁচবে না| সে জঘন্য কাজ করেছে বলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে| এবং তার মৃত্যুর জন্য সেই দায়ী হবে| 14 “এখন সেই দুষ্ট লোকের কোন সন্তান থাকতে পারে যে পিতার মন্দ কাজ দেখে সেইভাবে জীবনযাপন করতে অস্বীকার করছে| সেই ভাল সন্তান হয়তো ন্যায্য ব্যবহার করে| 15 সে হয়তো মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত বলির অংশ খেতে পর্বতে যায় না| প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না| 16 সেই ভাল সন্তান হয়তো অপরের অবস্থার সুযোগ নেয না| বন্ধক দিয়ে ধার দেয় আবার ধার শোধ করলে বন্ধক ফিরিয়ে দেয়| সে হয়তো ক্ষুধার্ত লোককে খাদ্য দেয় এবং বস্ত্রহীনদের বস্ত্র দেয়| 17 সে হয়তো গরীবদের সাহায্য করে, কেউ ধার চাইলে তাকে ধার দেয় এবং সুদ চায় না, সে হয়তো আমার বিধিসকল পালন ও তার অনুধাবন করে, সেই উত্তম সস্তান তার পিতার পাপের জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে না, সে বাঁচবে| 18 তার পিতা লোকদের আঘাত ও চুরি করে থাকতে পারে, আমাদের প্রজাদের প্রতি কোন মঙ্গলজনক কাজ না করে থাকতে পারে| সেই পিতা তার নিজের পাপের জন্যই মারা যাবে| 19 “তোমরা প্রশ্ন করতে পার, ‘কেন পিতার পাপেরজন্য পুত্র মারা যাবে না?’ এর কারণ, সেই পুত্র সত্ জীবনযাপন ও ভাল কাজ করেছিল| খুব সাবধানতাসহ সে আমার বিধিগুলি পালন করেছে তাই সে বাঁচবে| 20 যে ব্যক্তি পাপ করে কেবল সেই মারা যাবে| পুত্রকে তার পিতার পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে না; আবার পিতাকেও তার পুত্রের পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে না| ভাল লোকের ধার্মিকতা তার নিজের হাতে; তেমনই মন্দ লোকের মন্দতাও কেবল তারই অধিকারগত| 21 “এখন যদি কোন মন্দ লোক তার জীবন পরিবর্তন করে, তবে সে মরবে না, বরং বাঁচবে| সেই ব্যক্তি মন্দ কাজ থেকে বিরত হয়ে যত্ন সহকারে আমার বিধি পালন করা শুরু করে ন্যায়বান ও ভাল হয়ে উঠতে পারে| 22 সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর তার কৃত মন্দ কাজগুলি মনে রাখবেন না| কেবল তার উত্তমতা স্মরণে রাখবেন আর তাই সেই ব্যক্তি বাঁচবে!” 23 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “দুষ্ট লোকের মরণ হোক এ আমি চাই না| আমি চাই তারা যেন জীবন পরিবর্তন করে এবং বাঁচে| 24 “কিন্তু যদি কোন ভাল লোক ভাল হওয়া থেকে বিরত হয়ে দুষ্টলোকের মত আচরণ করে, অন্যায় করে, নানা ঘৃণিত কাজ করে তাহলে সে কি বাঁচবে? সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর তার পূর্বের সত্কাজগুলি স্মরণে আনবেন না| সে যে সত্য লঙঘন ও পাপ করেছে তার জন্যেই মারা যাবে|” 25 ঈশ্বর বলেন, “তোমরা যে বলে থাক, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু ন্যায়বান নন!’ কিন্তু হে ইস্রায়েল পরিবার শোন: আমিই ন্যায়বান, তোমরাই তারা যারা ন্যায়বান নও| 26 যদি কোন ভাল লোক পরিবর্তিত হয়ে দুষ্ট হয়ে ওঠে, তবে সে তার মন্দ কাজের জন্য অবশ্যই মারা যাবে| 27 আর যদি কোন দুষ্ট ব্যক্তি পরিবর্তিত হয়ে ভাল ও ন্যায়বান হয় তবে সে তার জীবন বাঁচাবে| সে বাঁচবে! 28 সেই ব্যক্তি নিজের মন্দতা দেখে বুঝে আমার কাছে ফিরে এসেছিল| সে অতীতে যে সব মন্দ কাজ করত তা আর করে না, তাই সে বাঁচবে, মরবে না|” 29 ইস্রায়েলের লোকরা বলে, “এটা ঠিক নয়! প্রভু আমাদের সদাপ্রভু ন্যায়বিচার করছেন না|”ঈশ্বর বলেন, “আমিই ন্যায়বান! তোমরাই ন্যায়বিচার করছ না!” 30 কারণ ইস্রায়েল পরিবার, আমি প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কর্মানুসারে বিচার করব| প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “তাই আমার কাছে ফিরে এস, মন্দ কাজ আর কর না! ঐসব ভয়ঙ্কর মূর্ত্তি যেন তোমাদের পাপে না ফেলে| 31 তোমরা যে সব মন্দ জিনিষ করেছ তা ছুঁড়ে ফেলে দাও| তোমাদের হৃদয় ও আত্মার পরিবর্তন কর| হে ইস্রায়েলবাসীরা, কেন তোমরা নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনবে? 32 আমি তোমাদের হত্যা করতে চাইনা| তোমরা ফিরে এসো, বাঁচো| প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন|
1 ঈশ্বর আমায় বললেন, “ইস্রায়েলের নেতাদের সম্বন্ধে তুমি অবশ্যই এই শোকের গান গাইবে| 2 “‘তোমার মা যেন সিংহদের মাঝে শুয়ে থাকা এক সিংহী| সে যুব সিংহদের মাঝে শুতে গেল আর অনেক শাবকের মা হল| 3 তার এক শাবক উঠে দাঁড়াল, সে হয়ে উঠল এক শক্ত সমর্থ যুব সিংহ| সে তার খাবার শিকার করতে শিখে গেল| সে একটি লোককে মারল এবং তাকে খেল| 4 লোকে তার গর্জন শুনল এবং তাকে একটি খাঁচায় ভরল| তারা যুব সিংহটির নাকে একটি আংটা পরাল এবং তাকে মিশরে নিয়ে গেল| 5 “‘মা সিংহীর আশা ছিল যে তার শাবক নেতা হয়ে উঠবে| কিন্তু এখন সে তার সব আশা হারিযে ফেলেছে| তাই সে তার শাবকগুলি থেকে আরেকটি শাবককে নিল| তাকে সিংহ হবার প্রশিক্ষণ দিল| 6 সে পূর্ণাঙ্গ সিংহদের সঙ্গে শিকারে গেল| সে একটি শক্তিশালী যুব সিংহ হয়ে উঠল| সে শিকার ধরতে শিখল এবং একটি লোককে খেল| 7 তারপর রাজবাটীগুলো আক্রমণ করল| সে শহরগুলি ধ্বংস করল| ঐ দেশের প্রত্যেকে কথা বলতে ভয় পেত, যখন তারা তার গর্জন শুনত| 8 তারপর তার চার ধারের লোকরা তার জন্য একটি ফাঁদ পাতল এবং তারা তাদের ফাঁদে তাকে ধরল| 9 তাকে আংটা পরাল এবং তালা বন্ধ করে রাখল| তারা তাকে তাদের ফাঁদে আটকাল| তাই তারা তাকে বাবিল রাজার কাছে নিয়ে গেল এবং তাকে সেখানে রেখে দিল যাতে ইস্রায়েলের কোন পর্বতে তার গর্জন শুনতে না পাওয়া যায়| 10 “‘তোমার মা একটি দ্রাক্ষালতার মতো, যা জলের কাছে রোপিত| তার কাছে ছিল অনেক জল| তাই সে অনেক সবল দ্রাক্ষালতা জন্মাতে পেরেছিল| 11 তারপর সে বড় বড় শাখাসমূহ জন্মালো| তারা ছিল চলার ছড়ির মত শক্ত| তারা ছিল রাজদণ্ডের মত| দ্রাক্ষালতা এমেই বেড়ে উঠতে লাগল| তার অনেক শাখা-প্রশাখা ছিল এবং তারা মেঘ পর্য়ন্ত পৌঁছে গেল| 12 কিন্তু রাগে দ্রাক্ষা-লতাটিকে শিকড় সমেত উপড়ে ফেলা হল| এবং মাটিতে ফেলে দেওয়া হল| পূর্বীয উষ্ণবাযু তার ওপর বয়ে গেল এবং তার ফল শুকিয়ে গেল| যখন সবল শাখাগুলো ভেঙ্গে গেলে তাদের আগুনে ফেলে দেওয়া হল| 13 এখন সেই দ্রাক্ষালতা রোপিত হয়েছে মরুভূমিতে| সেটি একটি অত্যন্ত শুষ্ক ও তৃষ্ণার্ত ভূমি| 14 বিরাট শাখাগুলিতে আগুন লাগল এবং তা ছড়িয়ে গেল এবং অন্যান্য শাখাগুলিকে ও ফলগুলিকে ধ্বংস করল| তাই সেখানে রইল না কোন শক্ত হাঁটার ছড়ি| সেখানে রইল না কোন রাজদণ্ড|’এটি ছিল মৃত্যু নিয়ে এক শোক গাথা আর তা শোকের মত করে গাওযা হল|”
1 এক দিন কয়েকজন প্রবীণ প্রভুর পরামর্শ জানতে আমার কাছে এসে আমার সামনে বসলেন| এটা ছিল নির্বাসনে থাকার সপ্তম বছরের পঞ্চম মাসের দশম দিন| 2 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 3 “হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের প্রবীণদের কাছে এই কথা বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: তোমরা কি আমার কাছে পরামর্শের জন্য এসেছ? যদি এসে থাক তবে আমি তা দেব না|’ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেন|’ 4 তুমি কি তাদের বিচার করবে? হে মনুষ্যসন্তান, তুমি কি তাদের বিচার করবে? তবে তাদের পিতারা যে জঘন্য কাজগুলি করেছে তার কথা নিশ্চয়ই তাদের বল| 5 তোমরা অবশ্যই তাদের বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: যেদিন আমি ইস্রায়েলকে বেছে নিই, আমি যাকোব পরিবারের ওপর আমার হাত তুলে মিশরে তাদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম এবং বলেছিলাম, “আমি তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর| 6 আমি তাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে যাবার এবং যে দেশ তাদের আমি দেব সেই ভূমিতে নিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম| সেই দেশ বহু উত্তম বিষয়ে পরিপূর্ণএবং অন্য বহুদেশের চেয়ে ভালো! 7 “আমি ইস্রায়েল পরিবারকে তাদের জঘন্য মূর্ত্তিগুলো ছুঁড়ে ফেলতে বলেছিলাম| বলেছিলাম মিশরের ঐসমস্ত নোংরা মূর্ত্তি দ্বারা তারা যেন নিজেদের অশুচি না করে| আমি তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর|” 8 কিন্তু তারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল, আমার কথা শুনতে চায়নি| তারা তাদের জঘন্য মূর্ত্তিগুলো ফেলেও দেয়নি, মিশরে ছেড়েও আসেনি| তাই আমি (ঈশ্বর) তাদের মিশরেই ধ্বংস করার পরিকল্পনা করলাম- যেন তারা আমার রোধর পূর্ণ মাত্রা বুঝতে পারে| 9 কিন্তু আমি তাদের ধ্বংস করিনি| আমি আমার সুনাম রক্ষা করতে চেয়েছিলাম| আমি চাইনি যে আমার নাম তাদের চারপাশের জাতিগুলোর মধ্যে কলঙ্কিত হোক্| আমি চেয়েছিলাম যে ঐ জাতিগুলি জানুক যে আমি ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বের করে আনছিলাম| 10 আমি ইস্রায়েল পরিবারকে মিশর থেকে বের করে এনেছি, তাদের মরুভূমির মধ্যে পরিচালিত করেছি| 11 আমার বিধিগুলি তাদের দিয়েছিলাম, যে সমস্ত বিধি আমাকে জানতে তাদের সাহায্য করবে সেগুলো তাদের বলেছিলাম| যদি কোন ব্যক্তি সেই সমস্ত নিয়ম পালন করে তবে সে বাঁচবে| 12 আমি তাদের বিশ্রামের বিশেষ বিশেষ দিনের কথাও বলেছিলাম| সেই সমস্ত ছুটির দিনগুলো তাদের ও আমার মধ্যে বিশেষ চিহ্নস্বরূপ ছিল| তারা এই বোঝাত যে আমিই প্রভু আর আমি তাদের আমার বিশেষ প্রজা করে তুলেছি| 13 “‘কিন্তু ইস্রায়েল পরিবার মরুভূমিতে আমার বিরুদ্ধে গেল| তারা আমার বিধিগুলি মানল না, আমার বিধি মানতে অস্বীকার করল| ঐসব বিধি পালন করলে লোকরা বাঁচবে| তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনগুলিকে মান্য করেনি, ঐসব দিনে আরও বেশী কাজ করেছে| আমি তাদের মরুভূমিতে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছিলাম, যেন তারা আমার রোধর পূর্ণ মাত্রা বুঝতে পারে| 14 জাতিগণ আমায় ইস্রায়েলকে মিশর দেশ থেকে বের করে আনতে দেখেছিল| আমি আমার সুনাম নষ্ট করতে চাইনি তাই ইস্রায়েলকে ঐ লোকদের সামনে ধ্বংস করিনি| 15 ঐ লোকদের সঙ্গে মরুভূমিতে আমি আর একটি প্রতিশ্রুতি করে বলেছিলাম: যে দেশ আমি তাদের দিচ্ছি তাতে তারা পা রাখতে পাবে না| সেই দেশ উত্তম এবং বহু উত্তম বিচারে পরিপূর্ণ, সব দেশের চেয়ে সুন্দর! 16 “‘ইস্রায়েলের লোকরা আমার বিধি মানতে অস্বীকার করেছিল, তারা আমার বিধিসকল পালন করেনি, বিশ্রামের দিনকে কোন গুরুত্বই দেয়নি| তারা এই সব করেছে কারণ তাদের হৃদয় সেই সব নোংরা মূর্ত্তির অধিকারে| 17 কিন্তু আমি তাদের জন্য দুঃখ বোধ করেছি তাই তাদের মরুভূমিতে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করিনি| 18 আমি তাদের সন্তানদের কাছে বলেছিলাম, “তোমরা তোমাদের পিতামাতার মতো হযো না| তাদের নোংরা মূর্ত্তি দ্বারা তোমাদের কলুষিত কোরো না| তাদের আজ্ঞার অনুসরণ ও আদেশ পালন কোর না| 19 আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমরা আমারই বিধি পালন কর ও আদেশ রক্ষা কর| তোমাদের যা বলি তাই- কর| 20 আমার বিশ্রাম দিনকে গুরুত্ব দিও| মনে রেখো যে, সব তোমার ও আমার মধ্যে বিশেষ চিহ্নস্বরূপ হবে যেন তোমরা জানতে পার যে আমিই তোমাদের প্রভু|” 21 “‘কিন্তু ঐ সন্তানরা আমার বিরুদ্ধাচরণ করল| তারা আমার বিধি পালন ও আদেশ রক্ষা করল না| আমি তাদের যা বলেছি তারা তা করেনি| ঐসব বিধি মঙ্গলের জন্য| যদি কোন ব্যক্তি তা পালন করে সে বাঁচবে| তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে কোন গুরুত্বই দেয়নি| তাই আমি তাদের মরুভূমিতে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যেন তারা আমার রোধর পূর্ণ মাত্রা বুঝতে পারে| 22 কিন্তু আমি থামলাম কারণ অন্য জাতিগণ আমায় ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বের করে আনতে দেখেছিল| আমি চাইনি যে আমার উত্তম নাম ধ্বংস হোক তাই ঐসব জাতির সামনে ইস্রায়েলকে ধ্বংস করিনি| 23 তাই মরুভূমিতে তাদের সঙ্গে আর একটি প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলাম তাদের আমি বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেব| 24 “‘ইস্রায়েলের লোকরা আমার বিধি পালন করেনি| তারা তা অগ্রাহ্য করেছিল| তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে কোন গুরুত্বই দেয়নি| তারা তাদের পিতাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলি পূজো করেছে| 25 তাই আমি তাদের এমন আজ্ঞা দিলাম যা মঙ্গলজনক নয়| এমন আদেশ দিলাম যা জীবনদায়ী নয়| 26 তাদের উপহারেই তাদের অশুচি হতে দিলাম| এমনকি তারা তাদের প্রথমজাত পুত্রদের বলি দিতে শুরু করল| যেন আমি তাদের ধ্বংস করি আর তারা জানে যে আমিই প্রভু|’ 27 তাই, হে মনুষ্যসন্তান, এখন তুমি ইস্রায়েল পরিবার সমূহের কাছে এই কথা বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: ইস্রায়েলের লোকরা আমার সম্বন্ধে ভয়ঙ্কর সব কথা বলছে এবং আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে| 28 কিন্তু তবু আমি তাদের যে দেশ দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সেখানে এনেছি| তারা যেখানে যেখানে পাহাড় ও সবুজ বৃক্ষ দেখেছে সেখানে সেখানেই পূজো করতে গেছে| তারা তাদের বলি ও রোধ উত্তেজক নৈবেদ্যনিয়ে ঐসব স্থানে গেছে| তারা ঐ স্থানে সৌরভ উত্পন্ন করে এমন বলি দিয়েছে ও পেয নৈবেদ্যও উত্সর্গ করেছে| 29 আমি ইস্রায়েলের লোকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন তারা ঐসব উচ্চ স্থানে যায়? কিন্তু সেই সব উচ্চ স্থান আজও এখানে রয়েছে|”‘ 30 ঈশ্বর বলেছেন, “ইস্রায়েলের লোকরা ঐসব মন্দ কাজগুলি করেছে| তাই ইস্রায়েল পরিবারের কাছে বল, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মত কাজ করে নিজেদের নোংরা করেছ, তোমরা বেশ্যার মত ব্যবহার করেছ এবং আমাকে ছেড়ে তোমাদের পূর্বপুরুষদের এই সব জঘন্য দেবতাদের মধ্যে থাকতে গেছ| 31 তোমরা সেই একই ধরণের উপহার দিচ্ছ| তোমাদের দেবতাদের কাছে উপহারস্বরূপ তোমরা তোমাদের সন্তানদের আগুনে দিচ্ছ| তোমরা আজও ঐসব নোংরা মূর্ত্তি দ্বারা নিজেদের নোংরা করছ| ইস্রায়েলের পরিবারসমূহ, তোমরা কি মনে কর উপদেশ চাইবার জন্য আমি তোমাদের আমার কাছে আসতে দেব? আমিই প্রভু ও সদাপ্রভু; আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাদের প্রশ্োন্নর উত্তর দেব না; কোন উপদেশও দেব না| 32 তোমরা বল যে তোমরা অন্য জাতির মতো হতে চাও এবং তোমরা তাদের মত জীবনযাপন করতে চাও| তোমরা কাঠ ও পাথরের দেবতার সেবা করে থাক|” সেটা অবশ্যই হওয়া উচিত্ নয়!”‘ 33 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাদের ওপর রাজা হয়ে রাজত্ব করব| আমি আমার বলবান বাহু উঠিযে তোমাদের শাস্তি দেব| তোমাদের প্রতি আমার রোধ প্রকাশ করব! 34 আমি তোমাদের ঐসব জাতিদের মধ্যে থেকে বার করে এনে জাতিগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম| কিন্তু আমিই আবার সেই সব দেশ থেকে তোমাদের সংগ্রহ করে আনব; তবে আমার বলবান বাহু দ্বারা তাদের শাস্তি দেব| তোমাদের প্রতি আমার রোধ প্রকাশ করব| 35 আমি আগের মত তোমাদের মরুভূমিতে চালিত করব, এ সেই জায়গা যেখানে জাতিগণ বাস করে| আমি সামনাসামনি হয়ে তোমাদের বিচার করব|” 36 তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশরের লাগোযা মরুভূমিতে আমি যে ভাবে বিচার করেছিলাম, সে ভাবেই তোমাদের বিচার করব|” প্রভু, আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন| 37 “আমি বিচারে তোমাদের দোষী সাব্যস্ত করব ও বন্দোবস্ত অনুসারে তোমাদের শাস্তি দেব| 38 যে সব লোক আমার বিরুদ্ধে উঠেছে ও পাপ করেছে, তাদের সবাইকে আমি দূর করে দেব| তাদের আমি তোমাদের দেশ থেকে দূর করব| তারা আর কখনও ইস্রায়েলে ফিরে আসবে না| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|” 39 এখন হে ইস্রায়েল পরিবার, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যদি কেউ তার নোংরা মূর্ত্তি পূজো করতে চায় তবে সে তার পূজো করুক কিন্তু যেন মনে না করে যে পরে সে আমার কাছ থেকে পরামর্শ পাবে! তোমরা আর আমার পবিত্র নাম অপবিত্র করবে না এমনকি তোমাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোকে উপহার দান দ্বারাও নয়|” 40 প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, “লোকরা অবশ্যই ইস্রায়েলের পবিত্র উঁচু পর্বতে আমার সেবা করতে আসবে! সমস্ত ইস্রায়েল পরিবার তাদের ভূমিতে থাকবে আর তারা আমার কাছে উপদেশ চাইতে পারে| সেই স্থানেই তোমরা তোমাদের নৈবেদ্য আমার কাছে আনবে| তোমাদের ফসলের প্রথম অংশ ও সমস্ত পবিত্র উপহার সেই স্থানে আমার কাছে আনবে| 41 আমি তোমাদের বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু আমিই আবার তোমাদের সংগ্রহ করে আমার বিশেষ প্রজা করে তুলব এবং তখন তোমাদের সুগন্ধযুক্ত বলির মত গ্রাহ্য করব আর ঐসব জাতি তা দেখবে| 42 আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দেব বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম সেই ইস্রায়েল দেশে যখন আমি তোমাদের আনব তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| 43 সেই দেশে তোমরা তোমাদের করা মন্দ কাজের কথা মনে করবে আর লজ্জিত হবে| ঐসব মন্দ বিষয় তোমাদের অশুচি করত| 44 ইস্রায়েল পরিবার, আমার সুনাম রক্ষার জন্য যে শাস্তি তোমাদের প্রাপ্য তা আমি তোমাদের দেব না| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন| 45 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 46 “হে মনুষ্যসন্তান, দক্ষিণের দিকে মুখ করো, এবং নেগেভের বিরুদ্ধে কথা বল| নেগেভের বনভূমিরবিরুদ্ধে ভাব্বাণী কর| 47 ‘প্রভুর বাক্য শোন| প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি বনে আগুন জ্বালাবার জন্যে তৈরী| সেই আগুন সমস্ত সবুজ ও শুষ্ক বৃক্ষ ধ্বংস করবে| প্রজ্জ্ব্বলিত শিখা নেভানো হবে না| দক্ষিণ হতে উত্তর দিকের সমস্ত ভূমিই আগুনে জ্বলে যাবে| 48 তখন লোকে দেখবে যে বয়ং প্রভুই অগ্নি প্রজ্জ্ব্বলিত করেছেন| সেই অগ্নি নেভানো হবে না!”‘ 49 তখন আমি বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু! যদি আমি এসব কথা বলি, লোকে বলবে যে আমি ধাঁধাঁ তৈরী করেছি!”
1 প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “হে মনুষ্যসন্তান, জেরুশালেমের দিকে তাকাও ও তার পবিত্র স্থানগুলির বিরুদ্ধে এই কথা বল| আমার হয়ে ইস্রায়েল দেশের বিরুদ্ধে কথা বল| 3 ইস্রায়েল দেশের প্রতি বল, ‘প্রভু এই সব কথা বলেন: আমি তোমার বিরুদ্ধে! আমি খাপ থেকে তরবারি খুলে ভাল ও মন্দ সব লোককেই তোমার কাছ থেকে দূর করব! 4 আমি যখন ভাল ও মন্দ উভয় প্রকার লোককেই তোমা হতে উচ্ছেদ করি তখন খাপ থেকে তরবারি বের করে তা দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকের লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করব| 5 তখন সমস্ত লোক জানবে যে আমিই প্রভু| আর এও জানবে যে আমিই খাপ থেকে তরবারি বের করেছি| আমার তরবারি কাজ শেষ না করা পর্য়ন্ত তার খাপে ফিরে যাবে না|”‘ 6 ঈশ্বর বলেন, “হে মনুষ্যসন্তান, মন ভেঙ্গে গেছে এমন মানুষ যেভাবে শোক করে, লোকদের সামনে সেই ভাবে শোক কর|” 7 তখন তারা তোমায় জিজ্ঞেস করবে, ‘কেন তুমি এই সব আওয়াজ করছ?’ তখন তুমি বলবে, ‘শোকের সংবাদ আসছে বলে|’ ভয়ে প্রত্যেকের আত্মা দুর্বল হয়ে যাবে, সমস্ত হাত দুর্বল হয়ে পড়বে, প্রত্যেক আত্মাও দুর্বল হবে এবং সবার হাঁটু জলের মত হয়ে পড়বে|’ দেখ সেই খারাপ সংবাদ আসছে| এসব ঘটনাও ঘটবে| প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব বলেন| 8 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 9 “মনুষ্যসন্তান লোকদের কাছে আমার হয়ে এই কথা বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন:“এই দেখ, একটি তরবারি এবং তরবারিটিতে শান দেওয়া হয়েছে ও পালিশ করা হয়েছে| 10 হত্যার জন্য সেই তরবারি ধারালো করা হয়েছে| তাতে ধার দেওয়া হয়েছে এমনভাবে যেন তা চমকায| “‘হে মনুষ্যসন্তান আমার শাস্তি দেবার লাঠির কাছ থেকে তোমরা দৌড়ে পালিয়েছ| বেতের আঘাত খেতে তোমরা অস্বীকার করেছ| 11 তাই তরবারিটিকে ঘসা-মাজা করা হয়েছে এবং ধার দেওয়া হয়েছে, এখন তা ব্যবহার করা যাবে| তরবারি ঘসে মেজে ধার দেওয়া হয়েছিল| আর এখন তা ঘাতকের হাতে দেওয়া যাবে| 12 “‘হে মনুষ্যসন্তান, চিত্কার কর| তীক্ষ্ণ শব্দে চিত্কার কর! কারণ আমার প্রজাদের ও ইস্রায়েলের শাসকদের বিরুদ্ধে সেই তরবারি ব্যবহার করা হবে| ঐ শাসকরা যুদ্ধ চাইত, তাই তরবারি এলে তারা আমার প্রজাদের সঙ্গে থাকবে| দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য তোমার জাঙ্গে চড় মেরে আঘাত কর| আর তোমার শোক প্রকাশ করতে উচ্চ শব্দ কর! 13 এটা কেবল পরীক্ষা নয়| তোমরা ছড়ির দ্বারা শাসন অগ্রাহ্য করেছিলে তাই তোমাদের শাস্তি দিতে আমি আর কি ব্যবহার করতাম? তরবারি|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন| 14 ঈশ্বর বলেন, “মনুষ্যসন্তান, হাততালি দাও, আমার হয়ে লোকদের কাছে বল|”“হ্যাঁ, তরবারিকে দুবার, এমনকি তিন বার আসতে দাও| এই তরবারি মানুষ হত্যার জন্য, তা মহাহত্যার জন্য| এই তরবারি তাদের টুকরো টুকরো করে ফেলবে! 15 তাদের হৃদয় ভয়ে গলে যাবে আর বহু লোক পতিত হবে| নগরের দরজার কাছে খগ দ্বারা বহুলোক হত হবে| হ্যাঁ, খগ বজ্রের মত চমকাবে, হত্যার জন্যই তাতে শান দেওয়া হয়েছে! 16 তরবারি শাণিত হও! ডানদিকে ছেদ কর| সোজাসুজি কেটে চল, বাম দিকে ছেদ কর| তোমার তরবারি যে দিকে চায় যাক! 17 “তখন আমিও আমার হাতে তালি দেব| আমার রোধ নিবৃত্ত করব| আমি প্রভুই একথা বলছি|” 18 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 19 “হে মনুষ্যসন্তান, দুটি রাস্তা অাঁক যা দিয়ে বাবিলের রাজার তরবারি ইস্রায়েলে আসতে পারে| দুটি রাস্তাই ঐ একই নগরী বাবিল থেকে এসেছে| তারপর রাস্তার মাথা থেকে শহর পর্য়ন্ত একটা চিহ্ন অাঁক| 20 চিহ্নটা ব্যবহার কর তরবারি কোন রাস্তা ব্যবহার করবে তা বোঝাতে| একটা রাস্তা অম্মোনীয়দের শহর রব্বার দিকে গেছে| অন্য পথটি গেছে যিহূদার দিকের সুরক্ষিত শহর জেরুশালেমে! 21 যে জায়গায় দুই রাস্তা আলাদা হয়ে গেছে সেখানে বাবিলের রাজা এসেছে| বাবিলের রাজা ভবিষ্যত্ জানার জন্য যাদু চিহ্ন ব্যবহার করেছে| সে তীর নিয়ে নাড়াচাড়া করেছে, পারিবারিক দেবতার কাছে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছে এবং য়কৃতের দিকে তাকিযেছে| 22 “ঐ চিহ্নগুলি তাকে ডানদিকের পথ ধরতে বলেছে, যে পথ জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছে! সে প্রাচীর-ভেদক যন্ত্র আনার পরিকল্পনা করছে| আজ্ঞা পেলেই তার সৈন্যরা হত্যা করতে শুরু করবে| তারা যুদ্ধের সিংহনাদ করবে এবং তারপর শহরের চারধারে মাটির প্রাচীর গড়বে| প্রাচীর পর্য়ন্ত যাবার একটা জাঙ্গাল তৈরী করবে| শহর আক্রমণের জন্য একটা কাঠের মিনারও তৈরী করবে| 23 ইস্রায়েলের লোকরা ঐসব যাদু চিহ্নের মানে বুঝবে না| তারা তাঁর কাছে একটা প্রতিশ্রুতি করেছিল, কিন্তু তিনি তাদের পাপ সম্বন্ধে স্মরণ করাবেন| তখন ইস্রায়েলীয়রা বন্দী হবে|” 24 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তোমরা অনেক মন্দ কাজ করেছ| তোমাদের পাপগুলো পরিষ্কার ভাবেই দেখা যাচ্ছে| তোমরা আমাকে স্মরণ করতে বাধ্য করেছ যে তোমরা দোষী; তাই তোমরা শএুদের হাতে ধরা পড়বে| 25 আর ওহে ইস্রায়েলের দুষ্ট নেতারা, তোমরা হত হবে| তোমাদের শাস্তির সময় এসেছে, শেষ দশা ঘনিয়ে আসছে!” 26 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “শিরস্ত্রান খুলে ফেল! মুকুট খুলে নাও! পরিবর্তনের সময় এসেছে| গণ্যমান্য নেতাদের নত করা হবে আর যারা সাধারণ তারা গণ্যমান্য নেতা হবে| 27 আমি শহরটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব| এরকমটি আগে কখনও হয়নি, কিন্তু আমি এমন এক জনকে শহরটি দেব যার এটি দাবী করবার অধিকার আছে|” 28 ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, লোকদের কাছে আমার হয়ে এই কথা বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু অম্মোনের অধিবাসী ও তাদের লজ্জাকর দেবতাদের উদ্দেশ্যে এই সব কথা বলেন:“তরবারি! একটি তরবারি! সেই তরবারিটি তার খাপের বাইরে আছে| তাকে পরিষ্কার করে ঘসা মাজা হয়েছে| তরবারিটি হত্যা করার জন্য প্রস্তুত! বিদ্য়ুত্ চমকের মত তাকে পালিশ করা হয়েছে! 29 তোমার দর্শনগুলি কোন কাজের নয়| তোমার যাদু তোমায় কোন সাহায্য করবে না| তা কেবল মিথ্যার ঝুড়ি| খগ এখন দুষ্ট লোকের গলায়| শীঘ্রই তারা মৃতদেহে পরিণত হবে| তাদের সময় ঘনিয়ে এসেছে| মন্দের শেষ হবার সময় হয়েছে|” 30 “‘তরবারি (বাবিল) তুলে তা খাপে ফিরিয়ে রাখ| বাবিল তুমি যেখানে সৃষ্টি হয়েছিলে, যে দেশে তোমার জন্ম হয়েছিল, সেখানেই আমি তোমার বিচার করব|” 31 তোমার বিরুদ্ধে আমার রোধ ঢেলে দেব| গরম বাতাসের মত আমার রোধ তোমায় বালিয়ে দেবে| আমি তোমাকে হিংস্র, হত্যায পটু এমন লোকদের হাতে তুলে দেব| 32 তোমরা জ্বালানীর মত হবে| তোমাদের রক্ত পৃথিবীর গভীরে বইবে; লোকে আর তোমাদের স্মরণ করবে না| আমিই প্রভু এই কথা বলেছি!”‘
1 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি নিধন শহরগুলির বিচার করবে? তারা যেসব ভয়ঙ্কর কাজ করেছে সে সম্বন্ধে কি তাকে বলবে? 3 তুমি অবশ্যই বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, এই শহরটি নরঘাতকে পূর্ণ, তাই তার শাস্তির সময় আসবে| সে নিজের জন্য নোংরা মূর্ত্তিসমূহ তৈরী করেছিল আর সে ইসব মূর্ত্তিই তাকে নোংরা করেছে! 4 “‘জেরুশালেম নিবাসীরা, তোমরা বহুলোককে হত্যা করেছ, নোংরা মূর্ত্তি তৈরী করেছ| তোমরা দোষী আর তাই তোমাদের শাস্তি দেবার সময় এসেছে| তোমাদের শেষ দশা উপস্থিত এই জন্য অন্য জাতি তোমাদের নিয়ে ঠাট্ট করবে ও তোমাদের দেখে হাসবে| 5 দূরের ও কাছের লোকরা তোমাকে নিয়ে মজা করবে কারণ তুমি বিশৃঙ্খলতায পূর্ণ হয়ে তোমার সুনাম নষ্ট করেছ| ঐ দেখ উচ্চ হাসির শব্দ শোনা যায়| 6 “‘দেখ! জেরুশালেমে ইস্রায়েলের প্রতিটি শাসক অপর লোককে হত্যা করার জন্য নিজেকে বলবান করেছে| 7 জেরুশালেমের লোকরা তাদের পিতা-মাতাকে সম্মান করে না; তারা সেই শহরের বিদেশীদের আঘাত করে ও অনাথ এবং বিধ্বাদের ঠকায| 8 তোমরা আমার পবিত্র বিষয়গুলি ঘৃণা করে থাক ও আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে কোন মর্য়াদাই দাও না| 9 জেরুশালেমের লোকরা নির্দোষ লোকদের হত্যা করবার জন্য তাদের সম্বন্ধে মিথ্য়ে কথা বলে| লোকরা মূর্ত্তির পূজা করতে পর্বতগুলিতে যায় আর সহভাগীতার ভোজ খেতে জেরুশালেমে আসে|“‘জেরুশালেমে লোকে অনেক য়ৌনমূলক পাপ কাজ করে| 10 তারা তাদের পিতার স্ত্রীর সঙ্গে য়ৌন পাপ কাজ করে, মাসিকের সময় তাদের স্ত্রীদের ওপর বলাত্কার করে| 11 কেউ কেউ প্রতিবেশীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর পাপ কাজ করে; কেউ তার পুত্রবধূর সঙ্গে য়ৌন কাজ করে তাকে অশুচি করে; আবার কেউ কেউ তার নিজেরই বোনের ওপর বলাত্কার করে| 12 “‘জেরুশালেমের লোকরা, তোমরা হত্যা করার জন্য অর্থ নিয়ে থাক, ধার দিয়ে তার ওপর সুদ নিয়ে থাক, সামান্য অর্থের জন্য প্রতিবেশীকে ঠকিয়ে থাক| তোমরা আমায় ভুলে গেছ|’ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এইসব কথা বলেছেন| 13 “‘ঈশ্বর বলেন ‘এখন দেখ! আমি সশব্দে হাত নামিয়ে তোমায় থামাব; লোক ঠকানো ও হত্যা করার জন্য তোমায় শাস্তি দেব| 14 সে সময় তোমার কি সাহস হবে? যে সময় আমি শাস্তি দিতে আসি সে সময় কি তোমরা বলবান থাকবে? না! আমিই প্রভু, আমিই একথা বলছি আর যা যা বলেছি তাই সিদ্ধ করব| 15 আমি তোমাদের বিভিন্ন জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেব, বহু দেশে যেতে বাধ্য করব| শহরের নোংরা বিষয়গুলিকে আমি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব| 16 কিন্তু জেরুশালেম তুমি এই সব দোষে অপবিত্র হবে আর জাতিগণের সামনেই এইসব ঘটবে; তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|”‘ 17 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 18 “মনুষ্যসন্তান, রূপোর তুলনায় পিতল, লোহা, সীসা এবং টিন মূল্যহীন| স্বর্ণকার আগুন দিয়ে রূপো খাঁটি করে; রূপো তাপে গলে গেলে তা থেকে খাদ আলাদা করে| ইস্রায়েল জাতি আমার কাছে সেই অব্যবহার্য় খাদের মত হয়ে উঠেছে|” 19 প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘তোমরা মূল্যহীন জঞ্জালের মত হয়ে গেছ, তাই আমি তোমাদের জেরুশালেমে জড়ো করব| 20 স্বর্ণকার রূপো, পিতল, লোহা, সীসা ও টিন আগুনে ফেলে ফুঁ দিয়ে তা গরম করলে ধাতু যেমন গলতে শুরু করে, সেই একই ভাবে আমি তোমাদের আমার রোধরূপ আগুনে ফেলে গলাব| 21 আমি তোমাদের আমার সেই এোধরূপ আগুনে ফেলে তাতে ফুঁ দেব আর তোমরা গলতে শুরু করবে| 22 রূপো আগুনে গলে গেলে স্বর্ণকার যেভাবে তা সংগ্রহ করে, সেই একই ভাবে তোমরা শহরে গলে যাবে| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু আর এও জানবে যে আমিই তোমাদের বিরুদ্ধে আমার রোধ ঢেলে দিয়েছি|”‘ 23 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 24 “হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলকে বল যে সে শুচি নয়| নগরের উপরে আমার রোধর দিনে তা বৃষ্টি দ্বারা শুচি হয়নি| 25 জেরুশালেমের ভাব্বাদীরা দুষ্ট পরিকল্পনা করেছে; তারা গর্জনকারী সিংহের মত শিকার ধরে বহু প্রাণ নষ্ট করে; বহু মূল্যবান বিষয় হরণ করে; সেখানকার বহু মহিলাকে বিধ্বা করে| 26 “যাজকরা সত্যিই আমার শিক্ষাকে আঘাত করেছে; তারা আমার পবিত্র বিষয়গুলিকে যথার্থ মর্য়াদা দেয় না, গুরুত্বও দেয় না| তারা পবিত্র বিষয়গুলিকে মনেই করে না পবিত্র এবং শুচি বিষয়গুলিকে অশুচির মতোই দেখে| তারা লোকেদের এ বিষয়ে শিক্ষাও দেয় না| তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে সম্মান দেয় না এবং এমন আচরণ করে যেন আমার কোন গুরুত্বই নেই| 27 “জেরুশালেমের নেতারা নেকড়ের মত শিকার ধরে খাচ্ছে| এই সব নেতারা ধনের লোভে লোকেদের আক্রমণ ও হত্যা করে| 28 “ভাব্বাদীরা লোকদের সাবধান করে না| তারা সত্য ঢেকে রাখে| তারা সেই রকম কর্মীর মত যারা দেওয়াল মেরামত করে না, কেবল গর্ত বোজায| তারা কেবল মিথ্যা দর্শন পায়; মন্ত্র পড়ে মিথ্যা ভাবে ভবিষ্যত্ বলে| তারা বলে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন’ কিন্তু সে সব মিথ্যা কথা- প্রভু তাদের সঙ্গে কথাই বলেন নি! 29 “সাধারণ লোকের অবস্থার সুযোগ নিয়ে একে অপরকে ঠকায ও চুরি করে| তারা গরীব অসহায় ভিখারীদের সাহায্যে ধনী হয়, বিদেশীদের ঠকায; তাদের সাথে ন্যায্য ব্যবহার করে না! 30 “আমি লোকদের তাদের জীবন ধারা পরিবর্ত্তন করতে এবং নগর রক্ষা করতে বলেছিলাম| আমি তাদের দেওয়াল মেরামত করতে ও দেওয়ালের ঐসব গর্তের সামনে দাঁড়িয়ে নগর রক্ষার্থে যুদ্ধ করতে বলেছিলাম কিন্তু সাহায্যের জন্য কেউ আসেনি| 31 এই জন্য আমি তাদের ওপর আমার রোধ ঢেলে দেব; তারা যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য তাদের শাস্তি দেব কারণ এসব তাদের দোষ|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেছেন|
1 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, শমরিয়া ও জেরুশালেমকে নিয়ে এই গল্পটা শোন| দুই বোন ছিল, তারা একই মায়ের মেয়ে| 3 তারা মিশরে য়ৌবন কালেই বেশ্যা হয়ে উঠল| মিশরেই প্রথম তারা প্রেম করল ও পুরুষদের দিয়ে তাদের চুচুক টেপাত ও স্তন ধরতে দিত| 4 বড় মেয়ের নাম ছিল অহলাআর তার বোনের নাম ছিল অহলীবা|তারা আমার স্ত্রী হল আর আমাদের সন্তানসন্ততি হল| (অহলা প্রকৃতপক্ষে শমরিয়া আর অহলীবা প্রকৃতপক্ষে জেরুশালেমকে বোঝায|) 5 “তারপর অহলা আমার প্রতি অবিশ্বস্তা হল| সেও একজন বেশ্যার মত জীবনযাপন করত| সে তার প্রেমিকদের চাইতে লাগল; নীল পোশাক পরা অশূরীয় সৈন্যদের প্রতি সে কামাসক্তা হল| 6 ঐ অশ্বারোহী যুবকরা সবাই তার আকাঙ্খিত বিষয় হল| তারা সবাই ছিল হয় নেতা নয়তো অধ্যক্ষ| 7 অহলা নিজেকে ঐসব যুবকদের কাছে দিয়ে দিল| ঐ অশূরীয় সৈন্যরা সবাই ছিল বাছা বাছা সৈন্য| সে তাদের সবাইকে চাইল এবং তাদের নোংরা প্রতিমাদের দ্বারা কলুষিত হল| 8 এছাড়াও মিশরের সাথে তার প্রেম থেকে সে পিছপা হল না| মিশরের জন্যই য়ৌবনকালে তার প্রেম এসেছিল, মিশরেই ছিল সেই প্রথম প্রেমিক যে তার য়ৌবনের স্তন স্পর্শ করেছিল| মিশর তার প্রতি তার মিথ্যা প্রেম ঢেলে দিয়েছিল| 9 তাই আমি তাকে তার প্রেমিকদের হাতে ছেড়ে দিলাম| সে অশূরীয়কে চেয়েছিল, আমি তাকে তা দিলাম| 10 তারা তাকে বলাত্কার করল, তার সন্তানদের নিয়ে গেল আর খগ ব্যবহার করে তাকে হত্যা করল| তারা তাকে শাস্তি দিল যার বিষয়ে মহিলারা এখনও আলোচনা করে| 11 “তার ছোট বোন অহলীবা এসব ঘটতে দেখেও তার বোনের চাইতে বেশী পাপ করে চলল, অহলার চাইতেও সে আরও অবিশ্বস্ত হল| 12 সে অশূরীয় নেতাদের ও অধ্যক্ষদের চাইল; অশ্বারোহী নীল পোশাক পরা ঐ সৈন্যদেরও চাইল| এই সব যুবকরা সবাই ছিল তার ঈপিসত বস্তু| 13 আমি দেখলাম ঐ দুই মহিলাই এক ভুল দ্বারা তাদের জীবন ধ্বংস করতে চলেছে| 14 “অহলীবা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েই চলল| বাবিলে সে দেওয়ালে খোদিত পুরুষের আকৃতি দেখল| এই আকৃতিগুলি ছিল লাল পোশাক পরা কল্দীয পুরুষদের| 15 তাদের কোমরে ছিল কোমরবন্ধ, মাথায় ছিল পাগড়ী| ঐসব লোকদের দেখে মনে হত যেন অশ্বারোহীদের অধিকারিক; তারা ছিল কল্দীয, বাবিলে তাদের জন্ম| 16 আর অহলীবা তাদের চাইল| সে বাবিলে তাদের কাছে দূত পাঠাল| 17 তাই ঐসব বাবিলের পুরুষরা তার প্রেম শয়্য়ার পাশে এসে তার সাথে সহবাস করল| তারা তাকে ব্যবহার করে এত নোংরা করল যে সে তাদের প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠল| 18 “প্রত্যেকেই দেখল যে অহলীবা অবিশ্বস্ত| তার নগ্ন দেহকে সে এত জনকে উপভোগ করতে দিল যে আমি তার প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠলাম, যেমন তার বোনের প্রতি হয়েছিলাম| 19 বার বার অহলীবা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হল| তারপর সে মিশরে তার য়ৌবন কালের প্রেমের কথা স্মরণ করল| 20 সে গাধার মত শিশ্ন ও ঘোড়ার মত ভাসিযে দেওয়া বীর্য়্য় সম্পন্ন প্রেমিকদের কথা স্মরণ করল| 21 “অহলীবা, তুমি তোমার য়ৌবন কালের স্বপ্ন দেখলে, যে সময় তোমার প্রেমিকরা তোমার স্তনের বোঁটা স্পর্শ করত ও য়ৌবনের স্তন ধরত| 22 হে অহলীবা, প্রভু আমার সদাপ্রভু তাই এই সব কথা বলেছেন, ‘তুমি তোমার প্রেমিকদের প্রতি নিদারুণ বিরক্ত, কিন্তু আমি সেই প্রেমিকদের এখানে আনব আর তারা তোমায় ঘিরে ফেলবে| 23 আমি ঐ সমস্ত পুরুষদের বাবিল থেকে আনব, বিশেষ করে সেই কল্দীযদের| আমি পেকোদ, শোযা এবং কোযা থেকেও লোকদের আনব| আর অশূরীয় থেকেও লোকদের অর্থাত্ সেই নেতাদের ও আধিকারিকদের আনব| অশ্বারোহী আধিকারিকরা ও বাছাই করা অশ্বারোহী সৈন্যরা সবাই ছিল তোমার আকাঙ্খিত যুবক| 24 ঐ জনতার ভীড় তোমার কাছে আসবে| তারা ঘোড়ায় ও রথে চেপে তোমার কাছে আসবে| বহু লোক তাদের ঢাল ও শিরস্ত্রাণ নিয়ে তোমার চারিদিকে জড়ো হবে| আমি তাদের বলব তুমি আমার প্রতি কি করেছ আর তারা তাদের ইচ্ছে মত তোমাকে শাস্তি দেবে| 25 আমি যে কত ঈর্ষাণ্বিত তা তোমায় দেখাব| তারা তোমার প্রতি অতি রুদ্ধ হয়ে আঘাত করে তোমার নাক, কান কেটে ফেলবে| তারা তোমায় খগ দ্বারা হত্যা করে, তোমার সন্তানদের ধরে নিয়ে যাবে এবং অবশিষ্ট যা থাকবে তাতে আগুন লাগিয়ে দেবে| 26 তারা তোমার ভাল ভাল কাপড় ও অলঙ্কারগুলো নিয়ে যাবে| 27 আর মিশরে বসবাসের সময় থেকে তুমি যে সমস্ত কুকর্ম ও ব্যভিচার করেছিলে আমি তার সমাপ্তি ঘটাব| তুমি আর কখনও তাদের খোঁজ করবে না, আর কখনও মিশরকে স্মরণ করবে না|”‘ 28 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন, “তুমি যাদের ঘৃণা কর আমি তাদের হাতেই তোমায় তুলে দিচ্ছি| যাদের নিয়ে তুমি অতীষ্ঠ, তাদের হাতেই তুলে দিচ্ছি| 29 আর তারা যে তোমায় কত ঘৃণা করে তা দেখাবে| তোমার পরিশ্রমের দ্বারা উপার্জিত সব কিছুই তারা নিয়ে যাবে আর উলঙ্গ ও ব্বিস্ত্র অবস্থায় তোমাকে পরিত্যাগ করবে| লোকে স্পষ্টই তোমার পাপ দেখতে পাবে| তোমার বেশ্যার মত ব্যবহার ও দুষ্ট স্বপ্ন দর্শনও তারা দেখবে| 30 আমায় ত্যাগ করে অন্য জাতির পেছনে পেছনে ছুটে যাবার সময় তুমি ঐসব মন্দ কাজ করতে| তাদের নোংরা মূর্ত্তি পূজো করতে আরম্ভ করার পরেই তুমি ঐসব বাজে কাজ করলে| 31 তুমি তোমার বোনের পথ অনুসরণ করে তার মতোই জীবনযাপন করেছ| তাই আমি, তার ভাগ্য যেমন হয়েছিল সেইরকম কষ্ট তোমাকে পাওয়াব|” 32 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:“তুমিও তোমার বোনের পেয়ালা থেকে পান করবে| সেই পেয়ালাটি মাপে বেশ বড় ও গভীর| তোমার পান করা দেখে লোকে হাসবে আর তোমাকে উপহাস করবে| 33 তুমি এক জন মাতাল লোকের মত টলবে| তোমার শরীর মুর্ছিত হয়ে পড়বে| ঐ পেয়ালা ধ্বংসের ও উচ্ছেদের জন্য| তোমার বোন শমরিয়া যাতে পান করেছিল এটা তারই মত| 34 সেই পেয়ালার বিষ তুমি পান করবে, তার তলানি পর্য়ন্ত পান করবে| তারপর সেই পাত্র ছুঁড়ে ফেলে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করবে আর কষ্টে তোমার স্তন ছিঁড়ে ফেলবে| আমি প্রভু ও সদাপ্রভু বলছি এটা ঘটবে, আর আমিই এসব বলেছি|” 35 “তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘জেরুশালেম, তুমি আমায় ভুলে গেছ| তুমি আমায় দূর করে একাকী রেখে গেছ| আমাকে পরিত্যাগ করার জন্য ও বেশ্যার মত জীবন যাপন করার জন্য তোমায় তাই কষ্ট ভোগ করতে হবে| তোমার দেখা দুষ্ট স্বপ্নের জন্যও তোমায় কষ্টভোগ করতে হবে|”‘ 36 প্রভু আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি অহলা ও অহলীবার বিচার করবে? তবে তারা যে ভযানক কাজগুলি করেছে তা তাদের বল| 37 তারা ব্যভিচারমূলক পাপ করেছে| তারা দণ্ডার্হ অপরাধে অপরাধী| তারা এক জন বেশ্যার মত আচরণ করেছে| তাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সঙ্গে থাকবার জন্য আমাকে ত্যাগ করেছে| তাদের কাছে আমার যে সন্তানেরা ছিল, তাদের তারা জোর করে আগুনের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে বাধ্য করেছে যাতে তারা তাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোকে খাদ্য য়োগাতে পারে| 38 তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিন ও পবিত্র স্থানকে কোন গুরুত্ব দেয় নি| 39 তারা তাদের মূর্ত্তিগুলোর জন্য তাদের সন্তানদের হত্যা করেছে এবং সেই একই দিনে আমার সে জায়গাটাকে অশুচি করেছে| দেখ, তারা এসমস্তই আমার মন্দিরের মধ্যে করেছে! 40 “তারা দূরের পুরুষদের ডেকে এনেছে| তুমি ঐ লোকদের কাছে দূত পাঠিয়েছিলে আর তারা তোমাকে দেখবার জন্য এসেছিল| তুমি তাদের জন্য স্নান করলে, তোমার চোখে কাজল দিলে ও গযনা পরলে| 41 তুমি রাজকীয় বিছানায বসে তার সামনের টেবিলে আমার দেওয়া সুগন্ধী ও তেল সাজিযে রাখলে| 42 “জেরুশালেমের শব্দ শুনে মনে হল যেন ভোজে আমন্ত্রিত জনতার ভীড়| সেই ভোজে অনেকে এল; লোকে মরুভূমি থেকে আসছিল বলে পান করতে করতেই আসছিল| তারা সেই স্ত্রীলোককে বাউটি ও সুন্দর মুকুট দিল| 43 তখন আমি ব্যভিচারে যে স্ত্রীলোকটি জীর্ণ হয়ে পড়েছে তার সাথে কথা বললাম| তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তারা কি তার সঙ্গে এই য়ৌন পাপ করেই চলবে আর সেও কি তাদের সঙ্গে করবে?’ 44 কিন্তু লোকে যেমন বেশ্যার কাছে যায় সেই ভাবেই তারা তার কাছে যেতে থাকল| হ্যাঁ, তারা বারবার ঐ দুষ্টা স্ত্রীলোক অহলা ও অহলীবার কাছে যেতে থাকল| 45 “কিন্তু ধার্মিক লোকরা তাদের দোষী করবে| তারা ঐ দুই স্ত্রীলোককে ব্যভিচার ও হত্যার পাপে দোষী করবে| কারণ অহলা ও অহলীবা ব্যভিচারমূলক পাপ করেছে এবং যে সব লোকদের তারা হত্যা করেছে তাদের রক্ত এখনও তাদের হাতে লেগে রয়েছে!” 46 প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেছেন, “লোকদের এক জায়গায় জড়ো কর, তারা অহলা ও অহলীবার শাস্তি দিক| ঐ লোকরা ঐ দুই স্ত্রীলোককে শাস্তি দেবে ও তাদের নিয়ে ব্যঙ্গ করবে| 47 তারপর তারা পাথর ছুঁড়ে তাদের মেরে ফেলবে আর খগ দিয়ে ঐ দুই স্ত্রীলোককে টুকরো টুকরো করে কাটবে| তারা ঐ স্ত্রীলোকদের সন্তানদের হত্যা করে তাদের ঘরবাড়ী বালিয়ে দেবে| 48 এই ভাবে আমি ঐ দেশের লজ্জা দূর করব আর তারা যে কাজ করেছে অন্য স্ত্রীলোকরা সেই লজ্জাজনক কাজ হতে সাবধান হবে| 49 তোমার কৃত মন্দ কাজের জন্য তারা তোমায় শাস্তি দেবে| তোমরা নোংরা মূর্ত্তি পূজো করার জন্যও শাস্তি ভোগ করবে| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু ও সদাপ্রভু|”
1 প্রভুর কথাগুলি আমার কাছে এল| এটা ছিল নির্বাসনে থাকার নবম বছরের দশম মাসের দশম দিন| তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, আজকের দিনের তারিখ ও এই কথাগুলি লেখ: ‘এই দিনে বাবিলের রাজার সৈন্যরা জেরুশালেম ঘিরে ফেলেছিল|’ 3 এই ঘটনা সেই পরিবারকে বল যারা বাধ্য হতে অস্বীকার করে| তাদের এই বিষয়গুলি বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু একথা বলেন:“‘হাঁড়িটা আগুনে বসাও, হাঁড়িটা বসাও| আর তাতে জল ঢালো| 4 মাংসের টুকরোগুলো তার মধ্যে দাও| প্রত্যেকটা ভাল টুকরো তার মধ্যে দাও, উরু ও ঘাড়ের মাংসের টুকরোগুলি| সব চেয়ে ভাল হাড়ের টুকরো দিয়ে হাঁড়িটি ভর্তি কর| 5 পালের সেরা পশুগুলো নাও| হাঁড়ির নীচে কাঠগুলো জড়ো কর| মাংস সেদ্ধ কর, এমন ভাবে সেদ্ধ কর যেন হাড়গুলোও পরিপক্ক হয়!’ 6 “প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “জেরুশালেমের পক্ষে এটা প্রাণনাশক হবে| নিধন শহরের পক্ষে এটা হবে অমঙ্গলজনক| জেরুশালেম মরচে পড়া হাঁড়ির মত| মরচের ঐ দাগগুলি মোছা যাবে না! সেই পাত্র পরিষ্কার নয়| তাই তুমি অবশ্যই হাঁড়ির ভেতরের প্রত্যেকটা মাংসের টুকরো বের করে নেবে! ঐ মাংস খেও না! আর যাজকদেরও সেই মন্দ মাংস বাছতে দিও না| 7 জেরুশালেম মরচে পড়া হাঁড়ির মত| কারণ হত্যাকারীদের হত্যার রক্ত এখনও সেখানে রয়েছে| সে ঐ রক্তখোলা পাথরের উপর রেখেছে, মাটিতে ঢেলে তা মাটি চাপা দেয়নি! 8 আমি তার সেই রক্তখোলা পাথরের ওপরে রেখেছি যেন তা ঢাকা না হয়| আমি এমনটা করেছি যেন লোকে রুদ্ধ হয়ে নির্দোষ লোককে হত্যা করার শাস্তি তাকে দেয়|” 9 “তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘হত্যাকারীদের শহরের পক্ষে এ হবে অমঙ্গলজনক! আমি আগুনের জন্য প্রচুর কাঠ জড়ো করব| 10 পাত্রের তলায় কাঠ বোঝাই করে রাখব| আগুন জ্বালাও, ভালো করে মাংস রান্না কর! মশলা মেশাও এমনকি হাঁড়িগুলোও পুড়ে যাক| 11 তারপর খালি পাত্রটিকে কযলার ওপর রাখ| ওটাকে এমন এমন ভাবে উত্তপ্ত হতে দাও যাতে তার দাগগুলোতেও আগুন ধরে যায়| ঐ দাগগুলো গলে যাবে ও মরচে পড়ে ধ্বংস হবে| 12 “ঐ দাগগুলো ধুয়ে ফেলতে জেরুশালেমকে প্রচুর খাটতে হবে| কিন্তু সেই মরচে যাবে না! কেবল আগুনই (শাস্তি) সেই মরচে দূর করতে সক্ষম হবে| 13 “তুমি আমার বিরুদ্ধে পাপ করে পাপের দাগে দাগযুক্ত হয়েছিলে| আমি তোমায় পরিষ্কার করার জন্য ধুতে চাইলাম| কিন্তু সেই দাগ উঠল না| আমি আর ধোবার চেষ্টা করব না, যতক্ষণ না আমার প্রচণ্ড এোধ তোমার উপরে শেষ না করি! 14 “‘আমিই প্রভু, আমিই বলেছিলাম তোমার শাস্তি আসবে আর আমিই তা ঘটাব| আমি শাস্তি দেওয়া থেকে বিরত হব না| তোমার জন্য অনুশোচনাও বোধ করব না| তোমার মন্দ কাজের জন্য আমি তোমায় শাস্তি দেব|’ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথাগুলি বলেছেন|” 15 তারপর প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 16 “মনুষ্যসন্তান, তুমি তোমার স্ত্রীকে খুবই ভালবাস, কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকে তাকে নিয়ে নেব| তোমার স্ত্রী হঠাত্ মারা যাবে কিন্তু তুমি তোমার দুঃখ প্রকাশ করবে না, জোরে জোরে কেঁদো না| 17 চোখের জল ফেলো কিন্তু নিঃশব্দে| মৃত স্ত্রীর জন্য উচ্চস্বরে কেঁদো না| সাধারণতঃ যে কাপড় পরে থাক তাই পর| তোমার পাগড়ী বাঁধ, জুতো পর| শোক প্রকাশ করতে তোমার গোঁফ ঢেকে রেখো না আর মানুষ মারা গেলে লোকে সাধারণতঃ যা খায় তাও খেযো না|” 18 পরের দিন সকালে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা আমি লোকদের বললাম| সেই বিকেলে আমার স্ত্রী মারা গেল| পরের দিন সকালে ঈশ্বর যা আদেশ করেছিলেন আমি সেই অনুসারে কাজ করলাম| 19 তখন লোকে আমায় জিজ্ঞেস করল, “তুমি কেন এসব করছ? এসবের অর্থ কি?” 20 তখন আমি তাদের বললাম, “প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল; 21 ইস্রায়েলের পরিবারগুলিকে এই কথা বলো| প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘দেখ, আমি আমার পবিত্র স্থান ধ্বংস করব| তুমি এই স্থান সম্বন্ধে গর্বিত ও এর সম্বন্ধে প্রশস্তি গীত গেযে থাক| তোমরা সেই স্থান দেখতে ভালবাস ও সত্যই তাকে ভালোবাস| কিন্তু আমি সেই স্থান ধ্বংস করব আর যুদ্ধে যে শিশুদের তোমরা ছেড়ে এসেছিলে, তারা হত হবে| 22 কিন্তু তোমরা সেই একই কাজ করবে যেমনটি আমি আমার মৃত স্ত্রীর বিষয়ে করেছি| তোমরা তোমাদের শোক প্রকাশ করতে গোঁফ ঢাকবে না| মানুষ মারা গেলে লোকে সাধারণত যা খায় তা খাবে না| 23 তোমরা তোমাদের পাগড়ী বাঁধবে, জুতো পরবে কিন্তু শোক প্রকাশ করবার জন্য কেঁদো না| তোমরা তোমাদের পাপের কারণে ক্ষীণ ও দুর্বল হয়ে পড়বে| একে অন্যের কাছে গভীরভাবে আর্তনাদ করবে| 24 যিহিষ্কেল তোমাদের কাছে একটি চিহ্নস্বরূপ| সে যা যা করেছে তোমরাও তাই করবে| শাস্তির সেই সময় যখন আসবে তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|”‘ 25 “মনুষ্যসন্তান, আমি লোকদের কাছ থেকে সেই নিরাপদ স্থান (জেরুশালেম) ছিনিয়ে নেব| সেই সুন্দর স্থান তাদের আনন্দ দেয়, তারা তা দেখতে চায় ও তাকে প্রকৃতই ভালবাসে| কিন্তু সেই সময়ে আমি ঐ লোকদের কাছ থেকে এই শহর ও তাদের সন্তানসন্ততি ছিনিয়ে নেব| জেরুশালেমের জন্য দুঃসংবাদ নিয়ে অবশিষ্ট কেউ এক জন তোমাদের কাছে আসবে| 26 27 সেই সময়, তোমরা ঐ লোকটির সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হবে এবং চুপ করে থাকবে না| এই ভাবে, তুমি তাদের কাছে একটি চিহ্নস্বরূপ হবে| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু|”
1 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, অম্মোন সন্তানদের দিকে দেখ আর আমার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বল| 3 অম্মোন লোকদের বল: আমার প্রভু, আমার সদাপ্রভুর বাক্য শোন! আমার প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন: যখন আমার পবিত্র স্থান ধ্বংস হয়েছিল তখন তোমরা আনন্দিত হয়েছিলে| ইস্রায়েলের ভূমি কলূষিত হলে তোমরা তার বিরুদ্ধে গেলে| যিহূদা পরিবারের লোকদের বন্দী করে নিয়ে যাবার সময়ে তোমরা তাদের বিরুদ্ধে গেলে| 4 সেই জন্য আমি পূর্বের লোকদের হাতে তোমাদের সঁপে দেব আর তারা তোমাদের ভূমি অধিকার করবে| তাদের সৈন্যরা তোমাদের দেশে তাদের শিবির গড়বে| তারা তোমাদের মধ্যে বাস করবে, তোমাদের ফল খাবে ও তোমাদের দুধ পান করবে| 5 “‘আমি রব্বা শহরটিকে উটের চারণস্থান ও অম্মোন দেশকে মেষরা যেখানে বিশ্রাম নেয সেইরকম একটা স্থানে পরিণত করব| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু| 6 প্রভু এই কথাও বলেন, “জেরুশালেম ধ্বংস হলে পরে তোমরা আনন্দিত হয়েছিলে| তোমরা হাততালি দিয়েছিলে ও পা দাপিযেছিলে| তোমরা ইস্রায়েলের ভূমিকে নিয়ে অবজ্ঞাসহ ঠাট্ট া করেছিলে| 7 সেই জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব| তোমরা যুদ্ধে লুঠ করা মূল্যবান সামগ্রীর মত হবে| তোমরা তোমাদের অধিকার হারাবে| বহু দূর দেশে তোমাদের মৃত্যু হবে| আমি তোমাদের দেশ ধ্বংস করব! তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|”‘ 8 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “মোয়াব ও সেযীর বলে, ‘যিহূদা পরিবার অন্য জাতিদের মতই|’ 9 আমি মোয়াবের কাঁধ কেটে নেব| তার সীমার শহরগুলি নিয়ে নেব, ভূমির গৌরব বৈত্-য়িশীমোত, বাল্-মিযোন ও কিরিযাথযিম| 10 আর সেই শহরগুলো পূর্ব দেশের লোকদের দেব| তারা তোমাদের ভূমি অধিকার করবে আর আমি পূর্ব দেশের লোকদের দ্বারা অম্মোনের লোকদের ধ্বংস করব| তখন সবাই ভুলে যাবে এই কথা যে অম্মোন বলে এক জাতি ছিল| 11 তাই আমি মোয়াবকে বিচার অনুসারে শাস্তি দেব| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু|” 12 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “ইদোমের লোকরা যিহূদা পরিবারের বিরুদ্ধে উঠে প্রতিশোধ নিতে গিয়েছিল, তাই তারা দোষী|” 13 প্রভু আমার সদাপ্রভু আরও বলেন, “আমি ইদোমকে শাস্তি দেব, তাদের লোকজন ও পশুদের ধ্বংস করব| আমি তৈমন থেকে দদান পর্য়ন্ত সম্পূর্ণ ইদোম দেশটি ধ্বংস করব আর ইদোমীয়দের যুদ্ধে নিহত করব| 14 আমি ইদোমের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে আমার প্রজা ইস্রায়েলীয়দের ব্যবহার করব| এই ভাবে ইস্রায়েলের লোকেরা ইদোমের বিরুদ্ধে আমার রোধ প্রকাশ করবে| তখন ইদোমের লোকরা জানবে যে আমিই তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 15 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “পলেষ্টীয়রা প্রতিশোধ নেবার চেষ্টা করেছিল, তারা অত্যন্ত নিষ্ঠুর হয়েছিল এবং রোধ বহু সময় জ্বলেছে!” 16 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমি পলেষ্টীয়দের শাস্তি দেব; হ্যাঁ, আমি ঐ করেথীয লোকদের ধ্বংস করে দেব| সমুদ্রের উপকূলে বসবাসকারী ঐ লোকদের আমি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব| 17 আমি ঐ লোকদের শাস্তি দেব- প্রতিশোধ নেব| আমার রোধ তাদের শিক্ষা দেবে আর তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”
1 নির্বাসনের একাদশতম বছরের মাসের প্রথম দিনে প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “হে মনুষ্যসন্তান, সোর জেরুশালেমের বিরুদ্ধে বাজে কথা বলেছে, বলেছে ‘সাবাস! নগরের লোক জন রক্ষা করে যে দরজা তা ধ্বংস হয়েছে| ঐ দরজা আমার জন্য খুলে গেছে| শহর তো ধ্বংসপ্রাপ্ত, তাই তার থেকে মূল্যবান জিনিসগুলি আমি আনতে পারি|”‘ 3 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “সোর, আমি তোমার বিরুদ্ধে| আমি যুদ্ধ করার জন্য তোমার বিরুদ্ধে বহু জাতিকে আনব, তারা সমুদ্রের তটে ফিরে আসা ঢেউযের মত বার বার আসবে|” 4 ঈশ্বর বলেন, “সেই শএু সেনারা সোরের প্রাচীর ধ্বংস করবে ও তার স্তম্ভগুলি টেনে মাটিতে নামাবে| আমিও তার ভূমির ওপরের মাটির স্তর চেঁচে ফেলে সোরকে একটি নগ্ন পাষাণে পরিণত করব| 5 সোর সমুদ্রের ধারে মাছের জাল বিছাবার জায়গা হবে| আমিই একথা বলেছি!” প্রভু আমার সদাপ্রভু আরও বলেন, “সোর যুদ্ধে লুঠ করা মূল্যবান সামগ্রীর মত হবে|” 6 তারপর তার কন্যারা যারা মাঠে থাকবে তাদের হত্যা করা হবে| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু|” 7 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “আমি উত্তর দিক থেকে সোরের বিরুদ্ধে এক শএু আনব| সেই শএু নবূখদ্রিত্সর, বাবিলের মহান রাজা! সে তার সঙ্গে আনবে বিরাট সৈন্যবাহিনী আর তাতে অশ্ব, অশ্বারোহী সৈন্য ও অনেক পদাতিক সৈন্য থাকবে! ঐ সৈন্যরা অন্য অনেক জাতি থেকে আসবে| 8 নবূখদ্রিত্সর তোমাদের নিকটের (ছোট ছোট শহরগুলি) ধ্বংস করবে| সে শহর আক্রমণ করবার জন্য বহু মিনার গড়বে| তোমাদের আক্রমণ করবার জন্য সে একটি জাঙ্গাল তৈরী করবে| সে তার সৈন্যদলকে ঢাল দিয়ে রক্ষা করবে| সেই জাঙ্গালটি প্রাচীর পর্য়ন্ত যাবে| 9 সে প্রাচীর -ভেদক যন্ত্র নিয়ে আসবে ও তীক্ষ্ণ অস্ত্র দিয়ে তোমাদের মিনারগুলো ভেঙ্গে ফেলবে| 10 তার অশ্বের সংখ্যা এত হবে যে তাদের পায়ের ধূলো তোমায় ঢেকে ফেলবে| বাবিলের রাজা নগরের দ্বারে প্রবেশ করার সময়ে অশ্বারোহী সৈন্যের, শকট ও রথের শব্দে তোমার প্রাচীর কাঁপবে| 11 বাবিলের রাজা ঘোড়ায় চড়ে তোমার শহরের মধ্যে দিয়ে আসবে আর তার ঘোড়াগুলোর শব্দে সমস্ত পথ দলিত হবে| সে তরবারির দ্বারা তোমার লোকদের হত্যা করবে, তোমার শহরের দৃঢ় থামগুলো ভূমিসাত্ হবে| 12 নবূখদ্রিত্সরের লোকরা তোমাদের ধন দৌলত ছিনিয়ে নিয়ে যাবে| তোমরা যা বিক্রিী করতে চেয়েছিলে তাও তারা নিয়ে যাবে| তারা তোমাদের প্রাচীরগুলো ও মনোরম বাড়িগুলোকে ধ্বংস করবে এবং তোমাদের পাথর, তোমাদের কাঠ এবং তোমাদের মাটি সমুদ্রে ফেলে দেবে| 13 আমি তোমার আনন্দের গান থামিয়ে দেব, লোকে আর তোমার বীণার শব্দ শুনতে পাবে না| 14 আমি তোমায় একটি নগ্ন পাষাণে পরিণত করব| তুমি সমুদ্রের ধারে একটি জাল বিস্তার করবার জায়গার মত হবে! তোমাকে আবার গড়া হবে না! কারণ আমি, প্রভু এই কথা বলছি!” এই কথাগুলি প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেছেন| 15 প্রভু আমার সদাপ্রভু সোরের প্রতি এই কথা বলেন: “ভূমধ্যসাগরের উপকূলের দেশগুলো তোমার পতনের শব্দে কাঁপবে| তোমার মধ্যকার লোকরা আঘাত পেলে ও হত হলেই কি তা ঘটবে না? 16 তখন উপকূলের দেশগুলির নেতারা তাদের সিংহাসন থেকে নেমে এসে দুঃখ প্রকাশ করবে| তারা তাদের সুন্দর রাজকীয় বস্ত্র ত্যাগ করে ‘ত্রাসের বস্ত্র’ পরবে| তারা মাটিতে বসে ভয়ে কাঁপবে| তোমরা কত চট করে ধ্বংস হলে সেই ভেবে তারা চমকে উঠবে| 17 তোমার সম্বন্ধে তারা এই শোকগাথা গাইবে:“‘সোর, তুমি একটি বিখ্যাত শহর ছিলে| তুমি বিখ্যাত ছিলে এখন তুমি সব হারিযেছ! তুমি সমুদ্রে বলবান ছিলে আর তোমার মধ্যে বসবাসকারী লোকরাও তাই ছিল| মূল ভূখণ্ডেবাসকারী সবাই তোমার ভয়ে ভীত ছিল|” 18 এখন তোমার পতনের দিনে উপকূলের দেশগুলো ভয়ে কাঁপবে| তুমি উপকূলে বহু উপনিবেশ স্থাপন করেছিলে| ভীত হবে ঐ লোকরা তোমার পতন হলে!”‘ 19 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “সোর আমি তোমাকে ধ্বংস করব আর তুমি পুরানো শূন্য শহরে পরিণত হবে| কেউ সেখানে বাস করবে না| আমি সমুদ্রকে তোমার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে দেব, প্রচণ্ড ঢেউ তোমায় আচ্ছাদন করবে| 20 আমি তোমায় গভীরতম গর্তে পাঠাব- যেখানে মৃতেরা রয়েছে| বহু পূর্বে যারা মারা গেছে, তুমি তাদের সঙ্গে যোগ দেবে| আমি তোমায় অধো স্থানের জগতে সেই পুরানো শূন্য শহরে পাঠাব| তুমি অন্য অন্য পাতালগামীদের সাথে যোগ দেবে| তুমি আর কখনও জীবিতদের দেশে ফিরে আসবে না! 21 আমি তোমাকে ধ্বংস করব এবং তুমি চিরতরে বিগত হয়ে যাবে| লোকে তোমাকে খুঁজবে কিন্তু তারা আর কখনও তোমাকে খুঁজে পাবে না!” এই কথা প্রভু আমার সদাপ্রভুই বলেছেন|
1 প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, সোর সম্বন্ধে এই শোকের গান গাও| 3 সোরের সম্বন্ধে এই কথাগুলি বলো:“সোর, তুমি হলে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যাওয়া পথ| সমুদ্রের উপকূল বরাবর বহু উপজাতির জন্য তুমি বণিক| প্রভু, আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন: “‘সোর তুমি নিজেকে খুব সুন্দরী ভাব! 4 ভূমধ্যসাগর তোমার শহরের সীমা| তোমার নির্মাতারা তোমাকে সত্যিই সুন্দরী করে গড়েছিল| সেই জাহাজগুলোর মতন, যারা তোমা হতে পাড়ি দেয়| 5 তোমার নির্মাতারা তক্তা তৈরী করার জন্য সনীর পর্বত থেকে এরস কাঠ এনে ব্যবহার করত| তারা লিবানোনের এরস গাছ ব্যবহার করে তোমার মাসুল তৈরী করত| 6 তারা বৈঠা তৈরী করতে বাশনের ওক কাঠ ব্যবহার করেছিল| জাহাজের কুঠুরী তৈরী করার জন্য সাইপ্রাসের পাইন কাঠ ব্যবহার করেছিল| তারা থাকার জায়গাটা সাজিযেছিল হাতির দাঁতে| 7 তোমার পাল তৈরী করতে ব্যবহৃত হয়েছিল মিশরের তৈরী রঙ্গীন মসিনা| সেই পালই ছিল তোমার পতাকা, তোমার কুঠুরির আচ্ছাদন ছিল নীল ও বেগুনী রঙের| ওসব সাইপ্রাস ইলীশা উপকূল থেকে এসেছিল| 8 সীদোন ও অর্বদের লোকরা তোমার জন্য নৌকা বেয়ে এসেছিল| সোর, তোমার জ্ঞানী লোকরা জাহাজের নাবিক ছিল| 9 গবালের প্রবীণরা ও জ্ঞানবান লোকরা তক্তার মাঝে ছেঁদা মেরামতের জন্য জাহাজে ছিল| সমুদ্রের সব কটি জাহাজ ও তাদের নাবিকরা তোমার সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য এসেছিল| 10 “পারস, লূদ ও পূটের লোকরা তোমার সেনাদলে যোদ্ধা হয়েছিল| তোমার দেওয়ালে তারা তাদের ঢাল ও শিরস্ত্রাণ ঝুলিয়ে রাখত| তারাই সম্মান ও গৌরব এনে তোমার শহরের শোভা বর্ধন করেছিল| 11 অর্বদ ও হেলেখেরলোকরা তোমার শহর ঘিরে যে প্রাচীর, তাকে পাহারা দিত| তোমার চূড়োগুলো ছিল গামাদের অধিকারভুক্ত| তোমার শহরের চারধারের দেওয়ালে তারা তাদের ঢাল ঝুলিয়ে রাখত| তারা তোমার সৌন্দর্য়কে পূর্ণ রূপ দিয়েছিল| 12 “তোমার উত্তম বণিকদের মধ্যে তর্শীশ ছিল একজন| তারা রূপো, লোহা, দস্তা ও সীসা দিয়ে তোমার অপূর্ব জিনিসগুলি কিনত| 13 গ্রীস, তূবল এবং মেশক-এর লোকরা তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত| তারা এীতদাস ও পিতলের বিনিময়ে তোমার জিনিস কিনত| 14 তোগর্ম জাতির লোকেরা অশ্ব, যুদ্ধের অশ্ব ও গর্ধভ দিয়ে তোমার জিনিস কিনত| 15 দদানের লোকরাও তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত| তোমার জিনিসপত্র তুমি বহু জায়গায় বেচতে| লোকে হাতির দাঁত ও আবলুশ কাঠ দিয়ে তোমার দাম মেটাত| 16 তোমার বহু উত্তম দ্রব্য়ের জন্য অরামও তোমার সাথে ব্যবসা করত| তারা পান্না, বেগুনি কাপড়, বুটি দেওয়া কাপড়, মিহি মসীনা, প্রবাল ও পদ্মরাগ মণি দিয়ে তোমার জিনিস কিনত| 17 “যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকরাও তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত| গম, জলপাই, কচি ডুমুর, মধু, তেল ও মলম দিয়ে তারা তোমার জিনিসের দাম মেটাত| 18 দম্মেশক তোমার এক জন ভাল এতো ছিল| তোমার কাছ থেকে বহু চমত্কার জিনিস নিয়ে সে তোমার সঙ্গে ব্যবসা চালাত| ঐসব জিনিসের জন্য তারা হিল্বোন থেকে দ্রাক্ষারস ও সাদা পশম নিয়ে আসত| 19 দম্মেশক এবং উষল থেকে গ্রীসীয লোকরা তোমার কাছ থেকে জিনিষ কিনত| তারা পেটা লোহা, কাশ ও আখ নিয়ে আসত| 20 দদানের জন্য ভাল ব্যবসা হত| তারা তোমার সাথে জিনের নীচের কাপড়ের ব্যবসা করত| 21 আরব ও কেদরের নেতারা মেষশাবক, মেষ ও ছাগল দিয়ে তোমার দ্রব্য কিনত| 22 শিবা ও রামাহার বণিকরা তোমার সাথে ব্যবসা করত| তারা সমস্ত উত্তম মশলা, মূল্যবান পাথর ও সোনা দিয়ে তোমার জিনিস কিনত| 23 হারণ, কন্নী, এদন এবং শিবা, অশূর ও কিল্মদের বনিকরা তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত| 24 তারা সুঁচের কাজ করা নীল কাপড়, বহু রঙের গালিচা, শক্ত করে পাকানো দড়ি এবং এরস কাঠের গুড়ি দিয়ে ব্যবসা করত| 25 তোমার বেচে দেওয়া জিনিসগুলি তর্শীশের জাহাজগুলি বয়ে নিয়ে যেত|“সোর তুমি ঐ মালবাহী জাহাজের একটির মত| তুমি সমুদ্রে বহু ধনের ভারে ভারী| 26 তোমার দাঁড়ীরা তোমাকে গভীর সমুদ্রে নিয়ে গেছে| কিন্তু প্রবল পূর্বীয বাযু দ্বারা সমুদ্রেই তোমার জাহাজ ধ্বংস হবে| 27 তোমার ধনসম্পত্তি সব সমুদ্রে ছিটিয়ে যাবে| তোমার ধনসম্পত্তি- যা তুমি বেচো কেনো তা সমুদ্রে ছড়িয়ে যাবে| তোমার নাবিকরা, কর্ণধাররা ও ছিদ্র মেরামতকারীরা সব সমুদ্রে ছিটকে পড়বে| তোমার শহরের বণিকরা ও সৈন্যরা সবাই সমুদ্রে ডুবে যাবে| তোমার ধ্বংসের দিনেই এটা ঘটবে| 28 “তোমার নাবিকদের কান্না শুনে প্রধান ভূখণ্ডটি ভয়ে কেঁপে উঠবে! 29 তোমার জাহাজের সমস্ত কর্মীরা সমুদ্রে ঝাঁপ দেবে| দাঁড়ীরা ও নাবিকরা জাহাজ থেকে ঝাঁপ দিয়ে পাড়ের দিকে সাঁতার কাটবে 30 তারা তোমার সম্বন্ধে দুঃখ করবে| তারা কান্নাকাটি করে তাদের মাথার উপর ধূলো ছিটাবে ও ছাইযে গড়াগড়ি দেবে| 31 তারা তোমার জন্য মাথা কামাবে ও শোক বস্ত্র পরবে| মৃত ব্যক্তির জন্য শোক করার মত তোমাকে নিয়ে শোক করবে| 32 “তাদের সেই ভারী কান্নার মধ্যেও তারা তোমায় নিয়ে এই শোক গাথা গাইবে ও কাঁদবে|“সোরের মত আর কে আছে! তবু সোর হল ধ্বংস সমুদ্র মাঝে!’ 33 তোমার ব্যবসাযীরা সমুদ্র পারাপার করল, তোমার বিপুল ধনে ও পণ্যে তুমি বহুলোককে তুষ্ট করলে| পৃথিবীর রাজাদের ধনী করলে! 34 কিন্তু এখন তুমি সমুদ্র ও তার গভীর জলের দ্বারা চূর্ণ হয়েছ| তোমার বানিজ্য়িক পণ্য ও তোমার সমস্ত নাবিকদল তোমার সঙ্গে ডুবে গেছে| 35 উপকূলে বাসকারী সব লোকে তোমার সম্বন্ধে বিস্মিত| তাদের রাজারা ভযানকভাবে ভীত| তাদের মুখ সেই বিস্ময প্রকাশ করে| 36 অন্য দেশের বণিকরা তোমাকে নিয়ে শিস দেয়| কারণ তুমি শেষ হয়ে গেছ, আর কখনও তোমায় পাওয়া যাবে না|”‘
1 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, সোরের শাসককে বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন:“‘তুমি ভীষণ গর্বিতমনা! বলে থাক, “আমি দেবতা!”‘ আমি সমুদ্রের মাঝে দেবতাদের আসনে বসি|” কিন্তু তুমি ঈশ্বর নও, মানুষ! তুমি কেবল নিজেকে দেবতা ভাব| 3 তুমি নিজেকে দানিয়েলের চেয়েও জ্ঞানী মনে কর! মনে কর সব গুপ্ত বিষয় তুমি বের করতে পার! 4 দর্শন ও জ্ঞান দ্বারা তুমি তোমার ধন উপার্জন করেছ| তোমার ধনভাণ্ডারে সোনা ও রূপো জমা করেছ| 5 তোমার মহা প্রজ্ঞা ও ব্যবসা দ্বারা তুমি ধনসম্পত্তি বাড়িয়েছ| আর এখন ঐসব ধনের জন্য তোমার মন গর্বিত|” 6 “‘তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: সোর তুমি নিজেকে দেবতার মত মনে করতে| 7 আমি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য বিদেশীদের আনব| তারা জাতিগণের মধ্যে বড় ভয়ঙ্কর| তারা খাপ থেকে তরবারি টেনে বের করবে এবং তোমার সুন্দর জিনিসগুলির ওপর, যেগুলি তোমার প্রজ্ঞা থেকে অর্জিত, তার ওপর ব্যবহার করবে| তারা তোমার গৌরবও ধ্বংস করে দেবে| 8 তারা তোমায় টেনে কবরে নামাবে| তুমি সমুদ্রে মারা গেছে এমন নাবিকের মত হবে| 9 সেই ব্যক্তি তোমায় হত্যা করবে| তাও কি তুমি বলবে, “আমি দেবতা?” না! সে তোমাকে তার শক্তির অধীন করবে| তুমি দেখতে পাবে যে তুমি ঈশ্বর নও,- মানুষ! 10 তোমার সঙ্গে বিদেশীদেরমত আচরণ করা হবে এবং তুমি অপরিচিতদের মধ্যে মারা যাবে| এই সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটবে কারণ আমি এরকমই আজ্ঞা দিয়েছিলাম!” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব বলেছেন| 11 প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 12 “মনুষ্যসন্তান, সোরের রাজাকে নিয়ে এই শোকের গানটা গাও| তাকে বল, “প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন:“‘তুমি এক জন আদর্শবান লোক ছিলে, প্রজ্ঞায পূর্ণ ও সর্বাঙ্গ সুন্দর| 13 তুমি ঈশ্বরের উদ্য়ান এদনে ছিলে| তোমার কাছে সব ধরণের মূল্যবান পাথর- চুনি, পীতমনি, হীরে, বৈদুর্য়্য়মণি গোমেদক সূর্য়কান্ত, নীলকান্ত, হরিম্মণি ও মরকত ছিল| প্রতিটি পাথরই স্বর্নখচিত ছিল| তোমার সৃষ্টির দিনে তুমি ঐ সৌন্দর্য়্য়ে ভূষিত হয়েছিলে| 14 আমি বিশেষ ভাবে তোমার জন্যই একজন করূবকে তোমার একজন অভিভাবক হিসেবে নিযুক্ত করেছিলাম| আমি তোমাকে ঈশ্বরের পবিত্র পর্বতের ওপর স্থাপন করেছিলাম| আগুনের মত চকচকে ঐ মণি মানিক্যের মধ্যে দিয়ে তুমি যাতায়াত করতে| 15 তোমাকে যখন সৃষ্টি করেছিলাম তখন তুমি ধার্মিক ও সত্ ছিলে| কিন্তু তারপর তোমার মধ্যে দুষ্টতা পাওয়া গেল| 16 তুমি ব্যবসা করে বিরাট ধন লাভ করলে| কিন্তু তা তোমাকে হিংস্র করে তুলল এবং তুমি পাপ করলে| তাই আমি তোমাকে একটি অশুচি বস্তুর মত ব্যবহার করলাম| আমি তোমাকে ঈশ্বরের পর্বত হতে ছুঁড়ে ফেললাম| তুমি করূব দূতদের বিশেষ একজন ছিলে| তোমার ডানা আমার সিংহাসন ঢেকে রাখত| কিন্তু আমি তোমাকে আগুনের মত চক্মক্কারী ঐ মণি মানিক্য থেকে জোর করে বের করে দিলাম| 17 তোমার সৌন্দর্য়্য়ই তোমাকে গর্বিত করেছিল| তোমার গৌরবই তোমার প্রজ্ঞা নষ্ট করল তাই আমি তোমাকে মাটিতে আছাড় মারলাম| এখন অন্য রাজারা তোমার দিকে তাকিযে দেখে| 18 অসাধু ব্যবসাযী হিসাবে তুমি বহু অন্যায় কাজ করেছিলে| এই ভাবে পবিত্রস্থানগুলি অশুচি করলে| তাই আমি তোমার মধ্যে থেকেই আগুন বার করলাম| আর তা তোমাকে বালিয়ে দিল ও তুমি পুড়ে ছাই হলে| আর এখন সবাই তোমার লজ্জা দেখতে পাচ্ছে| 19 তোমার যা অবস্থা হল তা দেখে অন্য জাতির লোকরা বিস্মিত| তুমি লক্ষ্য করেছিলে, ভয় পেয়ে গিয়েছিলে এবং শেষ হয়ে গিয়েছিলে|”‘ 20 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন, 21 “মনুষ্যসন্তান, সীদোনের দিকে তাকিযে আমার হয়ে সেই স্থানের বিরুদ্ধে কথা বল| 22 বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন:“‘সীদোন আমি তোমার বিরুদ্ধে! তোমার লোকেরা আমায় সম্মান করতে শিখবে! আমি সীদোনকে শাস্তি দেব| তখন লোকে জানবে যে আমিই প্রভু, আমিই পবিত্র| আর সেই ভাবে আমার সঙ্গে ব্যবহার করবে| 23 আমি সীদোনে রোগ ও মৃত্যু পাঠাব আর শহরের মধ্যে বহু লোক মারা যাবে| খগ শএু সৈন্য শহরের বাইরের বহু লোককেও হত্যা করবে| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”‘ 24 “‘ইস্রায়েলের চার ধারের দেশগুলো যারা তাদের ঘৃণা করেছিল, তারা ইস্রায়েলকে আঘাত করতে আর জ্বালাজনক হুল বা কাঁটার মত হবে না| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু, তাদের সদাপ্রভু|”‘ 25 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “আমি ইস্রায়েলের জনগণকে অন্যান্য জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু আমিই আবার তাদের পরিবারকে এংত্র করব| তখন ঐ জাতিরা জানবে যে কেবল আমিই পবিত্র এবং আমার সাথে সেই অনাসারে ব্যবহার করবে| আমি আমার দাস যাকোবকে যে দেশ দিয়েছিলাম, ইস্রায়েলের জনগণ তখন সেই দেশে বাস করবে| 26 তারা সেই দেশে নিরাপদেই বাস করবে, ঘরবাড়ী বানাবে ও দ্রাক্ষা গাছ লাগাবে| চার পাশের যে জাতিরা তাদের ঘৃণা করত, আমি তাদের শাস্তি দেব| তখন ইস্রায়েলবাসী নিরাপদে বাস করবে, আর জানবে যে আমিই তাদের প্রভু ও ঈশ্বর|”
1 নির্বাসনের দশম বছরের দশম মাসের (জানুযারী) দ্বাদশ দিনে প্রভুর, আমার সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, মিশরের রাজা ফরৌণের দিকে তাকিযে তার বিরুদ্ধে ও মিশরের বিরুদ্ধে আমার হয়ে এই কথা বল| 3 বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:“‘মিশরের রাজা ফরৌণ, আমি তোমার বিরুদ্ধে| তুমি নীলনদের মাঝখানে শুয়ে থাকা সেই সামুদ্রিক দানব| তুমি বলে থাক, “এটা আমার নদী! আমিই এর সৃষ্টিকর্তা!” 4 কিন্তু আমি তোমার চোযালে বঁড়শি দিয়ে বিঁধিযে দেব| নীলনদের মাছরা তোমার অাঁশে ধরা পড়বে| 5 “‘আমি তোমাকে মাছশুদ্ধ নদী থেকে ডাঙ্গায তুলে আনব| আমি তোমাকে সবেগে নির্জন প্রান্তরে ছুঁড়ে ফেলে দেব| তুমি মাটিতে পড়ে থাকবে, কেউ তোমায় তুলে কবর দেবে না| আমি তোমাকে খাদ্যস্বরূপ বন্য পশু ও পাখিদের কাছে দেব| 6 তখন মিশরে বসবাসকারী সবাই জানবে যে আমিই প্রভু| “‘আমি কেন এসব করব? কারণ ইস্রায়েলের লোকরা সাহায্যের জন্য মিশরের ওপর নির্ভর করেছিল| কিন্তু মিশর হচ্ছে একটি পাতলা খাগের লাঠির মত| 7 যখন ইস্রায়েল তোমার সঙ্গে লেগে রইল, তখন তুমি ভেঙ্গে পড়লে এবং সে তোমার ঘাড় মটকে দিল| যখন ইস্রায়েল তোমার ওপর হেলান দিল, তুমি ভেঙ্গে পড়লে আর ওদের ফেলে দিলে| কিন্তু মিশর কেবল তাদের হাত ও কাঁধ বিদ্ধ করেছে| তারা সাহায্যের জন্য তোমার ওপর ভার দিয়েছিল, কিন্তু তুমি তার কাঁধ মুচড়ে ভেঙ্গে দিয়েছ|”‘ 8 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “আমি তোমার বিরুদ্ধে তরবারি আনব, এবং তোমার সমস্ত লোকজন ও পশুপাখি ধ্বংস করব| 9 মিশর শূন্য ও ধ্বংস হবে, তখন তারা জানবে আমিই প্রভু|”ঈশ্বর বললেন, “কেন আমি এসব কাজ করব? কারণ তুমি বলেছ, ‘এই নদী আমার, আমিই এর নির্মাতা|’ 10 তাই আমি (ঈশ্বর) তোমার বিরুদ্ধে| আমি তোমার নীলনদের বহু শাখা-প্রশাখাগুলিরও বিরুদ্ধে| আমি মিশরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব| মিগ্দোল থেকে আসওযান পর্য়ন্ত এমনকি কূশ দেশের সীমানা পর্য়ন্ত শহরগুলি শূন্য হবে| 11 কোন লোক এমনকি পশুও মিশরের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করবে না| 40 বছর ধরে কেউ তার মধ্যে দিয়ে যাবেও না, বসবাসও করবে না| 40 বছর ধরে শহরগুলি ধ্বংসস্তুপ হয়ে পড়ে থাকবে 12 আমি মিশর ধ্বংস করব| শহরগুলো 40 বছর ধরে ধ্বংসের মধ্যে পড়ে থাকবে| আমি জাতিগণের মধ্যে মিশরীয়দের ছড়িয়ে দেব, বিদেশে তাদের আগন্তুকের মত করব|” 13 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশরের লোকদের বহু জাতির মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন করব| কিন্তু 40 বছর পর আমি ঐ লোকদের আবার সংগ্রহ করব| 14 আমি মিশরীয়দের বন্দী দশা ফেরাব, তাদের জন্মভূমি পথ্রোষে ফিরিয়ে আনব কিন্তু তাদের রাজ্যও তার গুরুত্ব হারাবে| 15 অন্যান্য রাজ্যের থেকে সেই রাজ্য সব চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হবে| সেটা আর কখনও অন্যান্য জাতির উপরে নিজেকে উন্নত করবে না| আমি তাদের এমন ন্য়ূন করব যে তারা আর জাতিগণের উপরে কর্তৃত্ব করবে না| 16 ইস্রায়েল পরিবার আর কখনও মিশরের উপরে নির্ভর করবে না| ইস্রায়েলীয়রা তাদের পাপ স্মরণ করবে- তারা স্মরণ করবে যে তারা মিশরের দিকে সাহায্যের জন্য ফিরেছিল (ঈশ্বরের দিকে নয়)| আর তারা জানবে যে আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু|” 17 নির্বাসনের সাতাশতম বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 18 “মনুষ্যসন্তান, নবূখদ্রিত্সর বাবিলের রাজা সোরের বিরুদ্ধে প্রবলভাবে তার সৈন্যদের দিয়ে যুদ্ধ করিযেছিলেন| তারা প্রত্যেক সৈন্যের মাথা কামিয়েছিল| ভারী মাল বহন করা কালীন ঘর্ষন দ্বারা প্রত্যেক সৈন্য নগ্ন হয়েছিল| নবূখদ্রিত্সর ও তার সেনাদল সোরকে পরাজিত করতে কঠোর পরিশ্রম করেছিল কিন্তু তারা সেই সব কঠোর পরিশ্রম দ্বারা কিছুই লাভ করেনি|” 19 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশর দেশ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে দেব আর সে মিশরের লোকদের বহন করে নিয়ে যাবে| সেটাই হবে নবূখদ্রিত্সরের সেনাদলের বেতন| 20 আমি নবূখদ্রিত্সরকে তার কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার হিসাবে মিশর দেশ দিয়েছি| কারণ তারা আমার জন্য কাজ করেছে|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এসব কথা বলেছেন! 21 সেই দিন আমি ইস্রায়েল পরিবারকে শক্তিশালী করব, তখন হে যিহিষ্কেল আমি তোমাকে তাদের কাছে কথা বলতে দেব আর তারা জানবে যে আমিই প্রভু|”
1 প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ভাব্বাণী করে বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলো বলেন:“‘চিত্কার করে বল, “সেই ভয়ঙ্কর দিন আসছে|” 3 সেই দিন নিকট! হ্যাঁ, প্রভুর সেই বিচারের দিন নিকটেই| সেই দিন হবে মেঘাচ্ছন্ন এক দিন, সেটা হবে জাতিগণের বিচারের দিন! 4 মিশরের বিরুদ্ধে একটি তরবারি আসবে এবং তার পতন হবে! তাই দেখে, কূশ দেশের লোকরা ভয়ে কাঁপবে| বাবিলের সৈন্যরা মিশরের লোকদের বন্দী করে নিয়ে যাবে| মিশরকে তার ভিত্তি থেকে উত্পাটন করা হবে! 5 “‘বহু লোক মিশরের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিল, যেমন কূশ, পূট, লূদ-এর লোকরা, আরবীয়রা সবাই, এবং লিবিযার লোকরা| কিন্তু তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে এবং যারা চুক্তি করেছিল সেই সমস্ত লোকরাওধ্বংসপ্রাপ্ত হবে! 6 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন: “যারা মিশরের স্তম্ভের মত তারা পতিত হবে| তার পরাক্রমের যে গর্ব তার শেষ হবে| মিগ্দোল থেকে সিবেনী পর্য়ন্ত মিশরের লোকে যুদ্ধে হত হবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেছেন! 7 যে সব দেশ ধ্বংস হয়েছিল মিশর তাদের সঙ্গে যোগ দেবে| মিশরের শহরগুলো ঐ শূন্য শহরগুলোর মধ্যে থাকবে| 8 আমি মিশরে এক আগুন লাগাব, আর তার সমস্ত সাহায্যকারীরা ধ্বংস হবে| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু! 9 “‘সেই সময় আমি বার্তাবাহক পাঠাব, যারা জাহাজে করে সেই দুঃসংবাদ নিয়ে কূশ দেশে যাবে| কূশ এখন নিজেকে নিরাপদ ভাবে কিন্তু মিশরকে শাস্তি পেতে দেখে কূশ ভয়ে কাঁপবে| সেই দিন আসছে!” 10 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “আমি মিশর ধ্বংস করার জন্য বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে ব্যবহার করব| 11 নবূখদ্রিত্সর ও তার লোকরা সমস্ত জাতির মধ্যে ভযাবহ| আমি মিশর ধ্বংস করার জন্য তাদের আনব| তারা মিশরের বিরুদ্ধে তাদের খগ বের করে দেশ শবে পূর্ণ করবে| 12 আমি নীল নদকে শুষ্ক ভূমিতে পরিণত করব| তারপর সেই শুষ্ক ভূমি আমি দুষ্ট লোকদের কাছে বেচে দেব| আমি সেই দেশ শূন্য করতে বিদেশীদের ব্যবহার করব| আমিই প্রভু এই কথা বলেছি!” 13 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “আমি মিশরের মূর্ত্তিদেরও ধ্বংস করব| আমি নোফ থেকেও মূর্ত্তিগুলো দূর করব| মিশরে কোন নেতা থাকবে না আর আমি মিশর দেশে ভয় সৃষ্টি করব| 14 আমি পথ্রেষকে শূন্য করে দেব| আমি সোযনে আগুন লাগাব| আমি থিব্স্কে শাস্তি দেব| 15 এবং আমি মিশরের দুর্গ বেষ্টিত শহর সীনের বিরুদ্ধে আমার রোধ ঢেলে দেব| আমি থিব্স্-এর লোকদের ধ্বংস করব! 16 আমি মিশরে আগুন লাগাব| সীন শহর ভয়ে ছটফট করবে| সৈন্যরা থিব্স্এ প্রবেশ করবে আর প্রতিদিন নোফে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দেবে| 17 আবেন ও পী-বেশতের যুবকরা যুদ্ধে মারা পড়বে| আর স্ত্রীলোকদের বন্দী করা হবে| 18 সেই দিন, দিনের বেলায় তফন্হেষে অন্ধকার নেমে আসবে| কারণ আমি সেই স্থানে মিশরের ক্ষমতা ভেঙ্গে দেব| মিশরের নির্ভিকতার গর্ব শেষ হবে| একটা মেঘ মিশরকে ঢেকে দেবে আর তার কন্যাদের বন্দী করা হবে| 19 সুতরাং আমি মিশরকে শাস্তি দেব| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু|”‘ 20 নির্বাসনের এগারোতম বছরের প্রথম মাসের সপ্তম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন, 21 “মনুষ্যসন্তান, আমি মিশরের রাজা ফরৌণের বাহু ভগ্ন করেছি| পটি দিয়ে কেউ তার সেই হাত বেঁধে দেবে না| তা আরোগ্যও হবে না তাই সেই হাত তরবারিও ধরতে পারবে না|” 22 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশরের রাজা ফরৌণের বিরুদ্ধে| আমি তার দুটো হাতই ভেঙ্গে ফেলব, শক্ত হাতটা আর যে হাতটা ইতিমধ্যেই ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে সেটাকেও| আমি তার হাত থেকে খগ ফেলে দেব| 23 আমি মিশরীয়দের জাতিগণের মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন করে দেব| আমি তাদের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেব| 24 আমি বাবিলের রাজার হাত শক্ত করে তার হাতে আমার তরবারি দেব| কিন্তু আমি ফরৌণের হাত ভেঙ্গে দেব| তখন ফরৌণ ব্যথায চিত্কার করে কাঁদবে যেমন এক জন মৃত্যু পথযাত্রী আহত মানুষ কাঁদে| 25 তাই আমি বাবিলের রাজার হাত দৃঢ় করব কিন্তু ফরৌণের বাহু খসে পড়বে এবং তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু|“আমি বাবিলের রাজার হাতে খগ দেব আর সে মিশর দেশের বিরুদ্ধে তা ব্যবহার করবে| 26 আমি মিশরীয়দের জাতিগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেব এবং তাদের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেব| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”
1 নির্বাসনের এগারোতম বছরের তৃতীয় মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, এই কথাগুলি মিশরের রাজা ফরৌণ ও তার প্রজাদের গিয়ে বল|“‘তুমি এত মহান! তোমার সঙ্গে আমি কার তুলনা করব? 3 অশূরীয় হল লিবানোনের একটি এরস বৃক্ষের মত|তার শাখাসকল সুন্দর, ঘন ছায়া বিশিষ্ট আর দৈর্য়্ঘে বেশ লম্বা হওয়ায তার মাথা ছিল মেঘের মধ্যে! 4 জলে সেই গাছের বৃদ্ধি হত| গভীর নদী সেই বৃক্ষকে আরো লম্বা করেছিল| যেখানে বৃক্ষটি রোপণ করা হয়েছিল সেই জায়গারই কাছাকাছি নদীটি বয়ে যেত| এবং নদীটির সেই ভাগ থেকে ছোট ছোট জলধারা ঐ জমির অন্যান্য গাছগুলির কাছে বয়ে যেত| 5 তাই সেই বৃক্ষ ক্ষেত্রের অন্যান্য বৃক্ষের চেয়ে উচ্চতায় লম্বা ছিল| আর তাতে অনেক শাখাও জন্মাল| অনেক জলও ছিল তাই গাছের শাখাগুলি ছড়িয়ে গেল| 6 আকাশের সমস্ত পাখি সেই গাছের ডালে বাসা বাঁধল| আর মাঠের সমস্ত পশু সেই শাখার তলায় সন্তান প্রসব করল| সমস্ত মহান জাতি সেই গাছের ছায়ায় বাস করল| 7 সেই বৃক্ষ অতি সুন্দর, অতি বৃহত্ ও লম্বা ডাল যুক্ত ছিল| তার মূলগুলি প্রচুর জলও পেত! 8 এমনকি ঈশ্বরের বাগানের এরস বৃক্ষও এত বড় ছিল না| দেবদারু গাছেরও এতগুলো শাখা ছিল না| এমনকি অম্মোন বৃক্ষেরও এত শাখা ছিল না| ঈশ্বরের বাগানের কোন বৃক্ষই এত সুন্দর ছিল না| 9 আমি তাকে অনেক শাখা বিশিষ্ট ও সুন্দর করলাম| এই দেখে, এদনের বৃক্ষগুলি, যেগুলি ঈশ্বরের বাগানে ছিল, ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠল|”‘ 10 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “সেই গাছ বড় হল, তার মাথা মেঘ ছুঁলো আর তা এত উঁচু বলে তার মনে গর্ব হল! 11 সেই জন্য আমি একজন শক্তিশালী রাজার হাতে সেই বৃক্ষের ওপর নিয়ন্ত্রণভার দিলাম| সেই শাসক তার মন্দ কাজের জন্য সেই বৃক্ষকে শাস্তি দিল| আমি সেই বৃক্ষকে আমার উদ্য়ান থেকে তুলে ফেললাম| 12 বিদেশীরা পৃথিবীর ভয়ঙ্কর লোকরা তা কেটে তার শাখাগুলি পাহাড়ে ও উপত্যকায় ছড়িয়ে দিল| তার ভাঙ্গা ডালগুলি সেই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী ভাসিযে নিয়ে গেল| সেই গাছের তলায় আর ছায়া না থাকায় লোকে তাকে পরিত্যাগ করল| 13 এখন সেই পতিত বৃক্ষে পাখিরা বাস করে; বন্য পশুরা তার পতিত শাখাগুলি মাড়িয়ে যায়| 14 “এখন, জলের ধারের আর কোন গাছ ঐরকম বড়াই করবে না| তারা আর মেঘ পর্য়ন্ত পৌঁছাতে চাইবে না| যেসব বৃক্ষ জল পান করে, তাদের কেউ আর লম্বা বলে বড়াই করবে না| কারণ তারা সবাই মৃত্যুর জন্য নিরূপিত| তারা সবাই শিওলে চলে যাবে| অন্যরা, যারা মৃত্যুর পরে অগাধ গর্তে নেমেছে তাদের সঙ্গে তারা যোগ দেবে|” 15 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “সেই দিন যখন সেই বৃক্ষ শিওলে গেল, আমি লোকদের কাঁদিয়েছিলাম| আমি তাকে গভীর সমুদ্র দ্বারা ঢেকে ফেললাম, নদীগুলির প্রবাহ বন্ধ করে দিলাম যাতে জল আর প্রবাহিত হতে না পারে| আমি লিবানোনকে তার জন্য শোক করালাম, অন্য সব গাছগুলো বড় গাছটির জন্য দুঃখে অসুস্থ হয়ে পড়ল| 16 আমি সেই বৃক্ষের পতন ঘটালাম আর জাতিগণ তার পতনের শব্দে ভয়ে কেঁপে উঠল| আমি সেই বৃক্ষকে মৃত্যুর স্থানে পাঠালাম যেন তা গিয়ে, যারা পাতালে প্রবেশ করেছে এমন সব লোকের সঙ্গে যোগ দিতে পারে| অতীতে, এদনের সব গাছ, লিবানোনের সর্বোত্কৃষ্টরা সেই জল পান করত| সেই সমস্ত বৃক্ষ অগাধ গহবরে শান্তি পেয়েছিল| 17 হ্যাঁ, বড় বৃক্ষটির সঙ্গে ঐ বৃক্ষরাও মৃত্যুর স্থানে নেমে গেল| তারা যুদ্ধে নিহত লোকেদের সাথে যোগ দিল| সেই বড় বৃক্ষটি অন্য বৃক্ষদের বলবান করল| ঐ বৃক্ষগুলি জাতিগণের মধ্যে বড় বৃক্ষের ছায়ায় বাস করেছিল| 18 “হে মিশর, এদনে অনেক বড় ও বলবান বৃক্ষ ছিল| তার মধ্যে কোন বৃক্ষটির সঙ্গে আমি তোমার তুলনা করব? তারা সবাই অতল গহবরে চলে গেছে এবং তুমিও পাতালে ঐ বিদেশীদেরসঙ্গে যোগ দেবে| তুমিও সেখানে যুদ্ধে হত লোকদের মধ্যে পড়ে থাকবে|“হ্যাঁ, ফরৌণের প্রতি এটা ঘটবে আর তা ঘটবে তার সঙ্গে থাকা লোকের ওপর!” প্রভু, আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেন|
1 দ্বাদশতম বছরের নির্বাসনের দ্বাদশতম মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন: 2 “হে মনুষ্যসন্তান, মিশরের রাজা ফরৌণের সম্বন্ধে শোকের এই গান গেযে তাকে বল:“‘তুমি নিজেকে উপজাতির মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়া যুব সিংহের মত মনে করতে| কিন্তু আসলে তুমি হৃদের দানবের মত| তুমি জলস্রোতের মধ্যে পথ করে নিয়ে এগিয়ে যেতে, তোমার পা দিয়ে তুমি জল কাদাময় করে তুলতে| তুমিই নদীগুলিকে আলোড়িত করে দিতে|”‘ 3 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন:“আমি বহু লোক জন একত্র করেছি| এবার আমি তোমার উপরে আমার জাল ছুঁড়ব| তারপর লোকে তোমায় টেনে তুলবে| 4 তারপর আমি তোমায় মাটিতে ফেলে দেব| আমি তোমায় মাঠে ছুঁড়ে ফেলব| আকাশের সমস্ত পাখী যাতে তোমার ওপর বিশ্রাম করে সেই ব্যবস্থাই আমি করব| সমস্ত বন্য পশুরা এসে তৃপ্ত না হওয়া পর্য়ন্ত যাতে তোমাকে খেয়ে নেয তার ব্যবস্থা আমি করব| 5 আমি তোমার দেহ পর্বতের উপরে ছড়িয়ে দেব| উপত্যকাগুলি আমি তোমার মৃতদেহে পূর্ণ করে দেব| 6 আমি তোমার রক্ত পর্বতের উপর ঢেলে মাটি ভিজিয়ে ফেলব| নদীগুলি তোমার দ্বারা পূর্ণ হবে| 7 আমি তোমাকে অদৃশ্য করে দেব| আমি আকাশ ঢেকে ফেলে তারাগুলিকে অন্ধকারময় করব| আমি সূর্য়কে মেঘের পেছনে লুকিয়ে রাখব| আমি তোমার সমস্ত আলোকে অন্ধকার করে দেব| 8 কয়েকটি আলো আছে যা আকাশকে আলোকিত করে, কিন্তু তোমার কাছে সেগুলো যাতে অন্ধকার দেখায় আমি তার ব্যবস্থা করব| আমি তোমার সমস্ত দেশগুলিকে অন্ধকারময় করে দেব|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন| 9 “আমি যখন তোমাদের বন্দী হিসেবে যে দেশ তোমরা জান না এমন এক দেশে পাঠাব তখন বহু লোক দুঃখিত ও চিন্তাগ্রস্ত হবে| 10 উপজাতি তোমায় দেখে অবাক হয়ে যাবে| আমি যখন আমার তরবারিটি তাদের সামনে দোলাব তখন তারা তোমার দরুণ ভয়ে কাঁপবে| তোমার পতনের দিনে, প্রতি মুহুর্তে রাজারা ভয়ে কাঁপবে, প্রত্যেকে তার নিজের জীবনের জন্য ভীত হবে|” 11 কারণ প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেছেন: “যে বাবিলের রাজার তরবারি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে| 12 আমি তোমার লোকদের হত্যা করার জন্য ঐসব সৈন্যদের ব্যবহার করব| ঐ সৈন্যরা ভয়ঙ্কর জাতির লোক; মিশর যা নিয়ে গর্ব করে তা তারা ধ্বংস করবে| মিশরের লোক জনও ধ্বংস হবে| 13 মিশরের নদীর ধারে যত পশু আছে আমি তাদের সব ধ্বংস করব| ফলে লোকরা তাদের পায়ে পায়ে আর জল ঘোলা করবে না, পশুদের ক্ষুরের দ্বারাও জল আর ঘোলা হবে না| 14 অর্থাত্ আমি মিশরের জল শান্ত করব| তাদের নদীগুলো আস্তে আস্তে তেলের মত বইবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন| 15 “আমি মিশরকে একটি শূন্য স্থানে পরিণত করব| দেশটি সব কিছুই হারাবে| মিশরে বাসকারী সমস্ত লোককেই আমি শাস্তি দেব| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু| 16 “অন্য জাতির লোকরা ও কন্যারা এই শোকের গান গাইবে| মিশর ও মিশরের লোকেদের সম্বন্ধে তার শোকের এই গান গাইবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেছেন| 17 নির্বাসনের দ্বাদশতম বছরের প্রথম মাসের পঞ্চদশ দিনে প্রভুর এই বার্তা আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 18 “মনুষ্যসন্তান, মিশরের লোকদের জন্য কাঁদ| মিশর এবং সেই শক্তিশালী জাতিদের কবরের দিকে পরিচালিত কর; তাদের পাতালের দিকে পরিচালিত কর| যেখানে তারা অন্যান্য গর্তগামীদের কাছে যাবে| 19 “মিশর তুমি অন্য কারও চেয়ে উত্কৃষ্ট নও! মৃত্যুর স্থানে যাও, ঐ সমস্ত বিদেশীদের সঙ্গে গিয়ে শোও| 20 “যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছিল মিশর তাদের কাছে যাবে| যুদ্ধে মিশর নিজেই নিহত হয়েছিল| শএুরা তাকে এবং তার সমস্ত লোককে টেনে নিয়েছে| 21 “বলবান ও শক্তিশালী লোক যুদ্ধে হত হয়েছিল| ঐসব বিদেশী লোকরা মৃত্যুর স্থানে নেমে গিয়েছিল| ঐ স্থানে যারা হত হয়েছিল তারা মিশর এবং তার সাহায্যকারীর সাথে কথা বলবে| 22 “মৃত্যুর সেই স্থানে অশূর ও তার সমস্ত সৈন্যরা রয়েছে; তাদের কবর রয়েছে সেই গভীরতম গর্তে| ঐসব অশূরীয় সৈন্যরা যুদ্ধে হত হয়েছিল আর তাদের কবরগুলি তার ঐ কবরের পাশেই রয়েছে| জীবিত কালে তারা লোকদের ভীত করত কিন্তু এখন তারা সবাই শান্ত তারা সবাই যুদ্ধে নিহত হয়েছে| 23 24 “এলম সেখানে রয়েছে; তার সৈন্যরা তার কবরের চারপাশে রয়েছে; তাদের সবাই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল| ঐ বিদেশীরা গভীরতম গর্তে গিয়েছে| জীবিত কালে তারা লোকদের ভীত করত কিন্তু তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীর গর্তে গিয়েছে| 25 যুদ্ধে নিহত সমস্ত সৈন্য ও এলমের জন্য তারা বিছানা পেতেছে| এলমের সৈন্যরা তার কবরের চারপাশে রয়েছে| ঐসব বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল| জীবিত কালে তারা লোকেদের সন্ত্রস্ত করত কিন্তু তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীর গর্তে গিয়েছে| তারা নিহত অন্যসব লোকেদের সঙ্গে রয়েছে| 26 “মেশক, তূবল এবং তাদের সব সেনারা ঐখানে রয়েছে; তাদের কবরও তারই পাশে| ঐসব বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল এরাই জীবিত কালে লোকদের ভীত করত| 27 এখন তারা বহু পূর্বে যে সব শক্তিশালী লোকরা মারা গিয়েছিল তাদের সাথে শায়িত| তারা তাদের যুদ্ধের অস্ত্র সমেত কবরস্থ| তাদের অস্ত্রগুলি তাদের মাথার নীচে কিন্তু পাপ তাদের হাড়ের মধ্যে কারণ তাদের জীবন কালে তারা লোকদের ভীত করেছিল| 28 “মিশর, তুমিও ধ্বংস হবে এবং ঐসব বিদেশীদের পাশে শয়ন করবে| তুমি ঐসব অন্য সৈন্যরা, যারা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল তাদের সাথে শয়ন করবে| 29 “ইদোমও সেখানে রয়েছে; তার রাজারা অন্য নেতাদের সঙ্গে সেখানে রয়েছে| তারাও শক্তিশালী সৈন্য ছিল কিন্তু এখন তারা যুদ্ধে হত অন্যান্য লোকদের সঙ্গে শায়িত| তারা ঐখানে ঐ বিদেশীদের পাশে শায়িত| গভীরতম গর্তে যারা গেছে তাদের সাথে তারা সেখানে রয়েছে| 30 “উত্তরের শাসকরা সবাই সেখানে রয়েছে| সীদোনের সব সৈন্যরা সেখানে রয়েছে| তাদের শক্তি লোকেদের সন্ত্রস্ত করেছিল কিন্তু এখন তারা সবাই লজ্জিত| ঐ বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত অন্য লোকদের সাথে শায়িত| তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীরতম গর্তে গিয়েছে| 31 “যারা মৃত্যুর স্থানে গিয়েছে ফরৌণ তাদের দেখবে| ফরৌণ ও তার লোকরা দেখে সান্তনা লাভ করবে| হ্যাঁ, তার সমস্ত সৈন্য যুদ্ধে নিহত হবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন| 32 “ফরৌণ তার জীবদ্দশায় লোকদের ভয় দেখিয়েছিল| কিন্তু এখন সে ঐ বিদেশীদের সঙ্গে শয়ন করবে| ফরৌণ ও তার সৈন্যবাহিনী যুদ্ধে নিহত অন্য সৈন্যদের সঙ্গে শয়ন করবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন|
1 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, তোমার লোকদের কাছে এই কথা বল, ‘আমি এই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শএুসেনা আনলে লোকে প্রহরী হিসাবে এক জনকে মনোনীত করবে| 3 শএু আসতে দেখলে সেই প্রহরী শিঙা বাজিযে লোকদের সাবধান করবে| 4 কিন্তু সেই সাবধান বাণী শুনে যদি কেউ তা অগ্রাহ্য করে তবে সৈন্যরা তাদের বন্দী করে নিয়ে যাবে আর সেই মানুষটি নিজে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী হবে| 5 সে শিঙ্গার আওয়াজ শুনেও তা উপেক্ষা করেছিল তাই তার মৃত্যুর জন্য তাকেই দায়ী করা হবে| কিন্তু সে যদি সেই সাবধান বাণীর দিকে মনোযোগ দিত তবে তার জীবন বাঁচাতে পারত| 6 “‘কিন্তু এও হতে পারে যে প্রহরীটি শএু সৈন্য দেখেও শিঙা বাজাযনি| সেই প্রহরীটি লোকেদের সাবধান করে দেয় নি| সৈন্যরা যদি লোকদের বন্দী করে নিয়ে যায় তাহলে সেটা তাদের পাপের কারণেই হবে কিন্তু সেক্ষেত্রে তাদের মৃত্যুর জন্য প্রহরী দায়ী হবে|’ 7 “এখন হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবারের জন্য প্রহরী হিসাবে আমি তোমাকেই মনোনীত করছি| তুমি যদি আমার মুখ থেকে কোন বার্তা শোন, তবে আমার হয়ে লোকদের সতর্ক করো| 8 আমি হয়ত তোমায় বলব, ‘এই মন্দ লোকরা মরবে|’ তখন তুমি অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে সাবধান করবে| যদি তুমি সেই দুষ্ট ব্যক্তিকে সাবধান না কর ও তার জীবনধারার পরিবর্ত্তন করতে না বল তবে সেই দুষ্ট লোক তার পাপেই মারা যাবে; কিন্তু আমি তোমাকে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করব| 9 কিন্তু তুমি যদি সেই দুষ্ট লোককে সাবধান করে এবং জীবনধারা পরিবর্ত্তন করতে ও পাপ হতে বিরত হতে বললেও যদি সেই দুষ্ট লোক পাপ করতে থাকে, তবে সে তার পাপেই মরবে কিন্তু তুমি তোমার প্রাণ রক্ষা করবে|” 10 “সুতরাং হে মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ইস্রায়েলের পরিবারের কাছে কথা বল| ঐ লোকেরা হয়তো বলবে, ‘আমরা পাপ করেছি ও বিধি অমান্য করেছি| আমাদের পাপ বহনের পক্ষে অত্যন্ত ভারী| ঐ পাপের জন্য আমরা ক্ষয় পাচ্ছি| বাঁচতে হলে আমরা কি করব?’ 11 “তুমি তাদের বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: ‘আমার জীবনের দিব্য, কোন লোকের মৃত্যুতে আমি কোন আনন্দ অনুভব করি না; এমনকি এক জন দুষ্ট লোকের মৃত্যুতেও নয়| আমি চাই না যে তারা মারা যাক্| আমি চাই যেন ঐ দুষ্ট লোকেরা ফিরে আসে| আমি চাই যে তারা তাদের জীবন ধারার পরিবর্ত্তন করুক এবং একটি সত্যিকারের জীবনযাপন করুক! তাই আমার কাছে ফিরে এস! মন্দ কাজ করা থেকে বিরত হও! ওহে ইস্রায়েলের পরিবার, তোমরা কেন মরবে?’ 12 “মনুষ্যসন্তান, তোমার লোকদের বল: ‘অতীতে কোন মানুষ যদি ভাল কাজ করে থাকে তবে পরে সে মন্দ হলেও পাপ করতে শুরু করলেও অতীতের সেই ভাল কাজ তাকে রক্ষা করবে না| কিন্তু যদি কোন মানুষ মন্দ হতে ফেরে তবে অতীতের করা মন্দ কাজ তাকে ধ্বংস করবে না| সুতরাং মনে রেখো পাপ করতে শুরু করলে অতীতের কৃত ভাল কাজ কাউকে রক্ষা করবে না|’ 13 “আমি যদি কোন ধার্মিক লোককে বলি যে সে বাঁচবে কিন্তু যদি সেই ব্যক্তি মনে করে অতীতের কৃত ভাল কাজ তাকে রক্ষা করবে আর মন্দ কাজ করতে শুরু করে তবে আমি তার অতীতে করা ভাল কাজ স্মরণ করব না| সে মন্দ কাজ করতে শুরু করেছে বলে মরবে! 14 “অথবা আমি এক মন্দ লোককে বলতে পারি যে সে মরবে কিন্তু সে তার জীবন পরিবর্ত্তন করতে পারে| সে পাপ করা থেকে বিরত হয়ে সঠিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে এবং ধার্মিক ও ন্যায়পরায়ণ হতে পারে| 15 টাকা ধার করার সময় যে জিনিস বন্ধক রেখেছিল তা ফিরিয়ে দিতে পারে| সে চুরি করা জিনিসের মূল্য ফেরত্ দিতে পারে| যে আজ্ঞা জীবন দেয়, তা পালন করতে পারে| এইসব মন্দ কাজ থেকে বিরত হতে পারে সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি অবশ্যই বাঁচবে, সে মরবে না| 16 অতীতে সে যে মন্দ কাজ করেছিল তা আমি মনে রাখব না| সে বেঁচে থাকবে কারণ সে এখন সঠিক পথে চলছে ও ন্যায্য কাজ করছে! 17 “কিন্তু তোমার লোকেরা বলে, ‘ওটা করা ঠিক হয়নি| আমাদের প্রভু কখনই এমন হতে পারেন না!’“কিন্তু ঐ লোকরা ন্যায্য আচরণ করছে না| 18 যদি এক জন ধার্মিক লোক ভাল কাজ করা বন্ধ করে পাপ করতে শুরু করে তবে সে নিজের পাপেই মরবে| 19 আর যদি এক মন্দ লোক মন্দ কাজ করা থেকে বিরত হয়ে সত্ ও ন্যায়পরায়ণভাবে জীবনযাপন করে, তবে সে বাঁচবে! 20 কিন্তু তোমরা তবু বল যে আমার পথ ন্যায্য নয় কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি , হে ইস্রায়েল পরিবার প্রত্যেক লোক তার কৃত কর্মের দ্বারা বিচারিত হবে!” 21 নির্বাসনের দ্বাদশতম বছরের দশম মাসের পঞ্চম দিনে জেরুশালেম থেকে এক জন লোক আমার কাছে এল| সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে সেখানে এসেছিল| সে বলল, “শহরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে!” 22 সেই লোকটি আমার কাছে আসার পূর্বেই বিকেল বেলা প্রভু আমার সদাপ্রভুর শক্তি আমার ওপর এল| ঈশ্বর আমায় বোবার মত করলেন যে সময় সেই ব্যক্তি আমার কাছে এল সে সময় প্রভু আমার মুখ খুলে দিয়ে আবার কথা বলতে দিলেন| 23 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন: 24 “হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের ধ্বংসিত শহরে কিছু ইস্রায়েলীয় বাস করছে| সেই লোকেরা বলছে, ‘অব্রাহাম কেবল সেই একজন যাকে ঈশ্বর সমস্ত দেশ দিয়েছিলেন| এখন আমরা বহুজন, সুতরাং নিশ্চয়ভাবে এই দেশ আমাদের!’ 25 “তুমি অবশ্যই তাদের বলবে যে প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তোমরা রক্ত শুদ্ধ মাংস খেয়ে ফেল, সাহায্যের জন্য মূর্ত্তির দিকে চেয়ে থাক ও হত্যা করে থাক, সুতরাং আমি কেন তোমাদের সেই দেশ দেব? 26 তোমরা তোমাদের তরবারির উপর নির্ভর কর| প্রত্যেকে ভযানক কাজ করে, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারজাতীয পাপ কাজ করে, সুতরাং তোমরা দেশটির অধিকার পাবে না|’ 27 “‘তোমরা অবশ্যই তাদের বলবে যে প্রভু ও সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমার জীবনের দিব্য দিয়ে আমি প্রতিজ্ঞা করে বলছি যে ঐ লোকরা তরবারি দ্বারাই ঐ ধ্বংসিত নগরের মধ্যে হত হবে! যদি কেউ নগর থেকে মাঠে যায় তবে আমি পশুদের দ্বারা তাকে হত্যা করব আর তারা তাকে খাবে| যদি কেউ দুর্গের বা গুহার মধ্যে লুকায তবে সেখানে সে রোগে অসুস্থ হয়ে মারা যাবে| 28 আমি সেই দেশকে শূন্য ও নষ্ট করব| দেশ তার সমস্ত গর্ব করার বিষয় হারাবে| ইস্রায়েলের পর্বতগুলি শূন্য হয়ে যাবে| সেই জায়গা দিয়ে আর কেউ যাবে না| 29 ঐ লোকরা বহু ভযানক কাজ করেছে| সেই জন্য আমি সেই দেশকে শূন্য ও আবর্জনা স্বরূপ করব| তখন এই লোকরা জানবে যে আমিই প্রভু|” 30 “এখন হে মনুষ্যসন্তান তোমার বিষয়ে| তোমার লোকরা দেওয়ালে হেলান দিয়ে থাকে আর দরজায দাঁড়িয়ে তোমার সম্বন্ধে কথা বলে| তারা একে অপরকে বলে, “চল গিয়ে শুনি প্রভু কি বলছেন|” 31 তারা তোমার কাছে এমনভাবে আসে আর তোমার সামনে এমনভাবে বসে মনে হয় যেন তারা আমারই প্রজা| তারা তোমার কথা শোনে কিন্তু তুমি যা বলছ তারা তা পালন করবে না| তারা কেবল তাদের যেটা ভাল বোধ হয় সেটাই করে| তারা কেবল লোক ঠকিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চায়| 32 “এই লোকদের কাছে তুমি ভালবাসার গান গাইয়ে ছাড়া আর কিছুই নও| তাদের কাছে তোমার গলা ভাল, তুমি ভাল বাজনাদার| তারা তোমার কথা শুনবে কিন্তু তুমি যা বলছ তা তারা করবে না| 33 কিন্তু তুমি যে সব বিষয়ের কথা বলছ তা প্রকৃতই ঘটবে| আর লোকে মেনে নেবে যে সত্যিই তুমি এক জন ভাব্বাদী|”‘
1 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল| তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ইস্রায়েলের মেষপালকদের বিরুদ্ধে এই কথা বল| প্রভু, আমার সদাপ্রভু যা বলেন তা হল এই: ‘তোমরা, ইস্রায়েলের মেষপালকরা কেবল নিজেদের পেটই ভরাচ্ছ; এটা তোমাদের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ হবে| তোমরা মেষপালকরা মেষদের কেন খাওয়াচ্ছ না? 3 তোমরা হৃষ্টপুষ্ট মেষগুলি ভোজন কর আর তাদের পশম দিয়ে নিজেদের জন্য কাপড় তৈরী কর| তোমরা হৃষ্টপুষ্ট মেষগুলিকে মেরে ফেল কিন্তু মেষের পালকে খাওয়াও না| 4 তোমরা দুর্বলদের সবল কর নি, অসুস্থদের যত্ন নাও নি, আঘাত প্রাপ্তদের ক্ষতস্থান বেঁধে দাওনি| মেষদের মধ্যে কেউ কেউ পথভ্রষ্ট হলে তোমরা তাদের ফিরিয়ে আনোনি| তোমরা হারিযে যাওয়া মেষদের খুঁজতে যাওনি| না, তোমরা নিষ্ঠুর ও কড়া মনোভাব দেখিয়েছ - সেই ভাবেই তোমরা মেষদের পরিচালনা করতে চেয়েছ! 5 “‘আর এখন মেষেরা ছিন্ন ভিন্ন কারণ কোন মেষপালক নেই| তারা সব রকমের বন্য পশুর খাদ্যে পরিণত হয়েছে, তারা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে| 6 আমার মেষপালরা সমস্ত পর্বত ও উপপর্বতে ঘুরে বেড়িযেছে, তারা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে গিয়েছে; তাদের খোঁজ করার ও তত্ত্বাবধান করার জন্য কেউ নেই|”‘ 7 তাই হে মেষপালকরা, প্রভুর এই বাক্য শোন, প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, 8 “আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমার কাছে এই প্রতিশ্রুতি করছি| বন্য পশুরা আমার মেষ ধরে নিয়ে গেছে| হ্যাঁ, আমার মেষপাল বন্য পশুর খাদ্য হয়েছে কারণ তাদের প্রকৃত মেষপালক নেই| আমার মেষপালকরা মেষপালের যত্ন নেযনি| না, তারা কেবল ঐ মেষদের মেরে খেয়েছে| তারা আমার মেষের পালকে চরাতে নিয়ে যায়নি|” 9 এই জন্য ওহে মেষপালকরা, তোমরা প্রভুর বাক্য শোন! 10 প্রভু, আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “দেখ, আমি মেষপালকদের বিরুদ্ধে, আমি তাদের হাত থেকে আমার মেষদের সংগ্রহ করব আর তাদের পালকের কাজ থেকে সরিয়ে দেব| তখন ঐ মেষপালকরা নিজেরা আর খেতে পাবে না| আমি মেষদের তাদের মুখ থেকে বাঁচাব; আমি তাদের আর ঐ মেষপালকদের খাদ্য হতে দেব না|” 11 প্রভু আমার সদাপ্রভু একথা বলেন, “আমি নিজে তাদের মেষপালক হব| আমিই আমার মেষদের খুঁজে তাদের দেখব| 12 কোন মেষপালকের মেষরা পথভ্রষ্ট হলে সে যেমন তাদের খুঁজে বেড়ায, সেই একই ভাবে আমিও আমার মেষদের খুঁজে বেড়াব| আমি আমার মেষদের রক্ষা করব| অন্ধকার ও মেঘলা দিনে তারা হারিযে গিয়ে যেখানে যেখানে ছড়িয়ে গিয়েছিল, আমি সেই খান থেকেই তাদের ফেরত আনব| 13 আমি তাদের জাতিগণের মধ্য থেকে ফিরিয়ে আনব| ঐ দেশগুলি থেকে আমি তাদের সংগ্রহ করে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত আনব| আর আমি তাদের ইস্রায়েলের পাহাড়, নদী ও যেখানে জনবসতি আছে সেখানেই চরাব| 14 আমি তাদের ঘাসে ভরা মাঠে নিয়ে যাব| তারা ইস্রায়েলের উঁচু পর্বতের উপর উঠে সেখানকার উত্তম ভূমিতে শোবে ও ঘাস খাবে| তারা ইস্রায়েলের পর্বতে সবুজ ঘাসে ভরা মাঠে চরবে| 15 হ্যাঁ, আমি আমার মেষপালদের চরাব ও তাদের বিশ্রামের স্থানে নিয়ে যাব|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন| 16 “আমি হারিযে যাওয়া মেষদের খুঁজব| যে মেষরা ছড়িয়ে গিয়েছিল তাদের ফিরিয়ে আনব| যে মেষেরা আঘাত পেয়েছিল তাদের আঘাতের স্থান বেঁধে দেব| কিন্তু ঐ হৃষ্টপুষ্ট বলবানদের মেষপালকদের ধ্বংস করব| তারা যে শাস্তির য়োগ্য তাই দিয়ে তাদের পেট ভরাব|” 17 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “আর এই যে আমার মেষপালরা, আমি মেষের মধ্যে বিচার করব| আমি মেষ ও ছাগের মধ্যে বিচার করব| 18 তোমরা ভাল জমিতে যে ঘাস হয়েছে তা খেতে পাচ্ছ, তবু কেন অন্য মেষেরা যে ঘাস খায় তা দলছ? তোমরা প্রচুর পরিষ্কার জল পান করতে সুযোগ পাও, তবে কেন অন্য মেষের পান করার জল ঘোলা করছ? 19 আমার মেষপালদের তোমাদের পায়ে দলানো ঘাস খেতে ও ঘোলা জল পান করতে হয়|” 20 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু তাদের উদ্দেশ্যে বলেন: “আমি নিজে মোটা ও রোগা মেষদের মধ্যে বিচার করব! 21 তোমরা তোমাদের শরীরের পাশ ও কাঁধ দিয়ে ঢুঁ মারছ| তোমরা সমস্ত দুর্বল মেষদের তোমাদের শিং দিয়ে ঢুঁ মেরে ফেলে দিচ্ছ| তাদের জোর করে বের করে না দেওয়া পর্য়ন্ত তোমরা তাদের ঠেলছ| 22 তাই আমি আমার মেষদের রক্ষা করব| বন্য জন্তুরা আর তাদের ধরে নিয়ে যাবে না| আমি এক মেষের সাথে অন্য মেষের বিচার করব| 23 তারপর আমি তাদের জন্য এক জন মেষপালককে নিযুক্ত করব; সে আমার দাস দাযূদ| সে তাদের খাওয়াবে ও তাদের মেষপালক হবে| 24 তখন আমি, প্রভু তাদের ঈশ্বর হব আর আমার দাস দাযূদ শাসক হয়ে তাদের মধ্যে বাস করবে| আমি, প্রভু এই কথা বলেছি| 25 “এবং আমি আমার মেষদের সঙ্গে একটি চুক্তি করব এবং তাদের মধ্যে শান্তি নিয়ে আসব| আমি দেশ থেকে হিংস্র পশুদের তাড়িয়ে দেব| তাহলে মেষরা প্রান্তরে নিরাপদে থাকবে ও বনের মধ্যে ঘুমোতে পারবে| 26 আমি আমার মেষদের ও আমার পর্বতের জেরুশালেমের চারপাশের স্থান আশীর্বাদ যুক্ত করব| আমি ঠিক সময়ে বৃষ্টি আনব| তাদের উপরে আশীর্বাদের ধারা নেমে আসবে| 27 মাঠের গাছগুলো ফল উত্পন্ন করবে| পৃথিবী ফসল উত্পন্ন করবে| তাই মাঠের মেষরা নিরাপদে থাকবে| আমি তাদের য়োযাল ভেঙ্গে ফেলব| যে লোকরা তাদের এীতদাস বানিয়ে রেখেছিল আমি তাদের শক্তি খর্ব করব| তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু| 28 জাতিগণ আর কখনও তাদের আএমন করবে না| ঐ পশুরা আর তাদের ভক্ষণ করবে না| তারা নিরাপদে বাস করবে; কেউ তাদের ভীত করবে না| 29 আমি তাদের সুন্দর বাগানের জন্য কিছু জমি দেব আর তারা সেই দেশে ক্ষুধায কষ্ট পাবে না| তারা জাতিগণের দ্বারা অপমানে অপমানিতও হবে না| 30 তখন তারা জানবে যে আমিই তাদের প্রভু ও ঈশ্বর আর তারা এও জানবে যে আমি তাদের সাথে আছি| আর ইস্রায়েলের পরিবার জানবে যে তারা আমার প্রজা|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন| 31 “তোমরা আমার মেষ, আমার চরণভূমির মেষ| তোমরা মানুষ মাত্র, আমিই তোমাদের ঈশ্বর|” এই কথা আমার প্রভু সদাপ্রভু বলেন|
1 প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, সেযীর পর্বতের দিকে তাকাও এবং আমার হয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বল| 3 তাকে বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন:“‘সেযীর পর্বত, আমি তোমার বিরুদ্ধে! আমি তোমাকে শাস্তি দেব; তোমাকে একটি শূন্য অকর্মণ্য ভূমি করে দেব| 4 আমি তোমার শহর সকল ধ্বংস করব| আর তুমি শূন্য হবে| তখন তুমি জানবে যে আমিই প্রভু| 5 কারণ তুমি সব সময় আমার প্রজাদের বিরুদ্ধে| ইস্রায়েলের সঙ্কটের সময় তুমি তাদের বিরুদ্ধে খগ ব্যবহার করেছ, এমনকি তাদের চরম শাস্তির সময়ে তা ব্যবহার করেছ|”‘ 6 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাকে মৃত্যুর হাতে তুলে দেব| মৃত্যু তোমাকে তাড়া করে বেড়াবে| তোমরা হত্যা করা ঘৃণা করোনি তাই মৃত্যু তোমাদের পিছনে তাড়া করতে থাকবে| 7 আর আমি সেযীর পর্বতকে শূন্য ও ধ্বংস স্থানে পরিণত করব| সেই শহর থেকে যারাই বেরিয়ে আসবে ও যারা শহরে যেতে চাইবে তাদের প্রত্যেককেই আমি হত্যা করব| 8 আমি তার পর্বতগুলি শবে পূর্ণ করব আর সেই মৃতদেহগুলি তোমাদের পর্বত, উপত্যকা ও নদ-নদীর চারধারে ছড়িয়ে পড়ে থাকবে| 9 আমি তোমায় চির কালের জন্য শূন্য করব| তোমার শহরে আর কেউ বাস করবে না; তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|” 10 তোমরা বলেছিলে, “ঐ দুই জাতি ও দেশ ইস্রায়েল ও যিহূদা আমাদের হবে, তা আমাদের নিজস্ব অধিকারে থাকবে|”কিন্তু প্রভু সেখানে রয়েছেন! 11 এবং প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “তোমরা আমার প্রজাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিলে| তোমরা তাদের প্রতি রোধ ও আমার প্রতি ঘৃণার মনোভাব দেখিয়েছিলে, তাই আমার জীবনের দিব্য দিয়ে আমি প্রতিশ্রুতি করে বলছি- তুমি যেমনভাবে তাদের আঘাত করেছ, তেমন ভাবেই আমি তোমাদের শাস্তি দেব| আমি তোমাদের শাস্তি দিলে আমার প্রজারা জানবে যে আমি তাদের সাথে আছি| 12 আর তোমরা এও জানবে যে আমি তোমাদের সব নিন্দা শুনেছি| তোমরা জেরুশালেমের পর্বতের বিরুদ্ধে বহু মন্দ কথা বলেছিলে; বলেছিলে, ‘ইস্রায়েল ধ্বংস হয়েছে! আমরা তাদের খাদ্যের মত চিবিয়ে খাব!’ 13 তোমরা গর্বিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলে| তোমরা বহুবার বক্ বক্ করেছ আর আমি তোমাদের প্রত্যেকটা কথা শুনেছি| হ্যাঁ, আমি তোমাদের কথা শুনেছি|” 14 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যখন আমি তোমাদের ধ্বংস করব তখন সমস্ত পৃথিবী আনন্দিত হবে|” 15 ইস্রায়েল দেশ ধ্বংস হবার সময় তুমি আনন্দিত হয়েছিলে| আমি তোমাদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করব| সেযীর পর্বত ও সমস্ত ইদোম দেশ ধ্বংস হবে| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু|”
1 “হে মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ইস্রায়েলের পর্বতগণের কাছে এই কথা বল| ইস্রায়েলের পর্বতগণকে প্রভুর বাক্য শুনতে বল! 2 তাদের কাছে বল প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘শএু তোমার বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলেছে| তারা বলেছে, বাহ! এখন প্রাচীন পর্বতগুলো আমাদের হবে!’ 3 “তাই আমার হয়ে ইস্রায়েলের পর্বতগণের কাছে কথা বল| তাদের বল প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, শএু তোমার শহর ধ্বংস করেছিল এবং সব দিক থেকে তোমায় আক্রমণ করেছিল যেন তুমি অন্য জাতির হও| লোকে তোমার সম্বন্ধে ফিস্ ফিস্ করে কথা বলেছে|”‘ 4 তাই হে ইস্রায়েলের পর্বতগণ, প্রভু, আমার সদাপ্রভুর এই বাক্যগুলি শোন: প্রভু আমার সদাপ্রভু এই বাক্য পর্বতগণের, জলস্রোত সকলের ও উপত্যকাগুলির, শূন্য ধ্বংসস্থান ও পরিত্যক্ত শহরগুলির- যেখানে লুঠ করা হয়েছে এবং যাদের নিয়ে তার চারপাশের জাতিগুলি হাসাহাসি করে, তাদের উদ্দেশ্যে বলেন| 5 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমি প্রতিশ্রুতি করছি, আমি আমার অন্তর্জ্বালায কথা বলব| দেখব যেন ইদোম ও অন্য জাতিরা আমার রোধ অনুভব করতে পারে| ঐ জাতিগণ তাদের নিজেদের স্বার্থে আমার দেশ হস্তগত করেছে| এই দেশের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করার দিনগুলো তাদের ভালোই কেটেছে| সেই দেশ তারা কেবল ধ্বংস করার জন্যই অধিকার করেছিল!” 6 “তাই, ইস্রায়েল দেশ সম্বন্ধে এই কথাগুলি বল| এই কথাগুলি পাহাড়, পর্বত, জলস্রোত ও উপত্যকাগুলিকে বল| তাদের বল, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি আমার অন্তর্জ্বালা নিয়ে কথা বলব| কারণ ঐসব জাতির অপমান তোমাদের সহ্য করতে হয়েছে|”‘ 7 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমিই সেই যে প্রতিশ্রুতি করেছ, আমি দিব্য দিয়ে বলছি, তোমার চারধারের জাতিকে ঐসব অপমানের জন্য দুঃখ ভোগ করতে হবে| 8 “কিন্তু ইস্রায়েলের পর্বতরা, তোমরা নতুন গাছের জন্ম দেবে আর আমার ইস্রায়েলীয় প্রজাদের জন্য ফল উত্পন্ন করবে| আমার প্রজারা শীঘ্রই ফিরে আসবে| 9 আমি তোমার সঙ্গে| আমি তোমায় সাহায্য করব| লোকে তোমার ভূমিতে চাষ ও বীজ বপন করবে| 10 তোমার মধ্যে বহু লোক বাস করবে| সমস্ত ইস্রায়েল পরিবার ও তাদের সবাই সেখানে বাস করবে| শহরগুলির মধ্যে লোকজন বাস করবে আর ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থানগুলি নতুন করে গড়ে তোলা হবে| 11 আমি তোমাদের মধ্যে বহু লোক ও পশুকে বাস করতে দেব| তারা বৃদ্ধি পাবে, তাদের অনেক সন্তানসন্ততি হবে| অতীতের মত তোমাতে বাস করার জন্য আমি বহু লোক আনব| আমি তা অতীতের থেকেও উত্তম করব| তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| 12 হ্যাঁ, আমি বহু লোককে পরিচালিত করব, আমার প্রজা ইস্রায়েলকে তোমার দেশে পরিচালিত করব| তুমি তাদের সম্পত্তি হবে আর তাদের সন্তানদের কেড়ে নেবে না|” 13 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “হে ইস্রায়েল দেশ, লোকে তোমার সম্বন্ধে মন্দ কথা বলে| তারা বলে তুমি তোমার প্রজাদের ধ্বংস করেছিলে| তারা বলে তুমি তোমার প্রজাদের সন্তানদের তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে গিয়েছিলে| 14 কিন্তু তুমি আর প্রজাদের ধ্বংস করবে না| তাদের সন্তানদের আর নিয়ে যাবে না|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন| 15 “ঐসব জাতি যে তোমাকে অপমান করে তা আমি আর হতে দেব না| ঐসব লোকদের দ্বারা তুমি আর আঘাতপ্রাপ্ত হবে না| তুমি আর তোমার লোকদের সন্তানদের নিয়ে যাবে না|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন| 16 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন, 17 “হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবার তাদের নিজের দেশে বাস করাকালীন মন্দ কাজের দ্বারা সেই দেশ অশুচি করত| আমার দৃষ্টিতে তারা মাসিকের দরুণ অশুচি স্ত্রীলোকের মত হল| 18 সেই দেশের প্রজাদের হত্যা করে তারা মাটিতে তাদের রক্ত ছিটিয়ে দিত| তারা তাদের মূর্ত্তি দ্বারা সেই দেশ অশুচি করত| তাই আমি তাদের প্রতি আমার রোধ প্রকাশ করলাম| 19 আমি তাদের জাতিগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি এবং দেশ সমূহের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি| তাদের মন্দ কাজের জন্য আমি তাদের য়োগ্য শাস্তি দিয়েছি| 20 কিন্তু ঐসব বিভিন্ন জাতির মধ্যেও তারা আমার সুনাম নষ্ট করেছে| কি ভাবে? এই সব জাতিরা বলে, ‘তারা প্রভুর লোক, কিন্তু তারা তাদের দেশ পরিত্যাগ করেছে এবং তাদের ঈশ্বরকেও!’ 21 “ইস্রায়েলীয়রা যেখানেই গেছে সেখানেই আমার পবিত্র নাম অপবিত্র করে| তাই আমি আমার সুনাম রক্ষা করতে যাচ্ছি| 22 তাই ইস্রায়েল পরিবারকে বল, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘হে ইস্রায়েল পরিবার, তোমরা যেখানেই গিয়েছ সেখানেই আমার পবিত্র নাম অপবিত্র করেছ| আমি এটা বন্ধ করার ব্যবস্থা করছি| ইস্রায়েল আমি তা তোমাদের জন্য নয় কিন্তু নিজ পবিত্র নামের জন্য করব| 23 আমি ঐ জাতিগণকে দেখাব যে আমার মহত্ নাম সত্যই পবিত্র| ঐসব জাতির মধ্যে তোমরা আমার উত্তম নাম নষ্ট করেছ| কিন্তু আমি দেখাব যে আমি কত পবিত্র| আমার নামকে তোমাদের সম্মান করতে শেখাব আর তখন ঐসব জাতি জানবে যে আমিই প্রভু|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন| 24 ঈশ্বর বলেছেন, “আমি তোমাকে ঐসব জাতিগণের কাছ থেকে বের করে এনে এক স্থানে জড়ো করে তোমাদের দেশে ফিরিয়ে আনব| 25 তারপর আমি তোমাদের পরিস্কার করবার জন্য ও মূর্ত্তিসমূহ পূজা করে তোমরা যে অশুদ্ধতা পেয়েছিলে সেটা ধুয়ে ফেলবার জন্য আমি তোমাদের ওপর পবিত্র জল ছেটাব|” 26 ঈশ্বর বলেন, “আমি তোমাদের এক নতুন আত্মা দেব এবং তোমাদের চিন্তাধারা পালেট দেব| আমি তোমাদের দেহ হতে পাথরের হৃদয় বের করে সেখানে নরম মানুষের হৃদয় স্থাপন করব|” 27 এবং আমার আত্মা তোমাদের মধ্যে স্থাপন করব| এক বার আমি তোমাদের হৃদয় পরিবর্ত্তন করলেই তোমরা আমার বিধিগুলি পালন করবে| সযত্নে আমার বিধি মেনে চলবে| 28 তখন আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দিয়েছি সেখানে তোমরা বাস করবে| তোমরা আমার লোক হবে এবং আমি তোমাদের ঈশ্বর হব|” 29 ঈশ্বর বললেন, “এছাড়াও আমি তোমাদের পরিত্রাণ করব এবং অশুচি হওয়া থেকে রক্ষা করব| আমি আজ্ঞা করব যেন শস্য ফলে আর তোমাদের দেশে দুর্ভিক্ষ আনব না| 30 আমি তোমাদের প্রচুর শস্য, ফল ও ক্ষেত ভরা ফসল দেব যেন বিদেশে তোমরা ক্ষুধার জন্য লজ্জায না পড়| 31 তোমরা তোমাদের কৃত মন্দ কাজগুলি স্মরণ করবে এবং বুঝবে যে সেসব ভাল করনি| তখন তোমাদের পাপ ও তোমাদের কৃত ভয়ঙ্কর কাজের জন্য তোমরা নিজেরাই নিজেদের ঘৃণা করবে|” 32 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “এ কাজ আমি আমার নিজের মঙ্গলের জন্য করছি, তোমাদের জন্য নয়- এ কথাটা তোমরা মনে রাখো এট আমি চাই| হে ইস্রায়েল, তোমরা যে ভাবে জীবনযাপন করেছ তার জন্য তোমাদের লজ্জিত ও বিষণ্ন হওয়া উচিত!” 33 প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব কথা বলেন, “যেদিন আমি তোমার পাপ ধোব, সে দিন আমি আবার লোকদের শহরে ফিরিয়ে আনব| সেই সব ধ্বংসিত শহর আবার গড়া হবে| 34 লোকরা আবার সেই জনবসতিহীন শূন্য জমি কর্ষণ করবে| তাই অন্যরা পাশ দিয়ে গেলে ধ্বংসস্তূপ দেখতে পাবে না| 35 তারা বলবে, ‘অতীতে এই দেশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল কিন্তু এখন তা এদোন উদ্য়ানের মত| শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল| সেগুলো ধ্বংসস্থান ও শূন্য হয়ে গিয়েছিল কিন্তু এখন তা সুরক্ষিত এবং লোকে সেখানে বাস করছে|”‘ 36 ঈশ্বর বললেন, “তখন যে জাতিরা এখনও তোমাদের চারধারে রয়েছে তারা জানবে যে আমিই প্রভু এবং আমিই ঐসব ধ্বংসস্থান আবার গেঁথেছি, ফাঁকা দেশে আবার রোপণ করেছি| আমি প্রভুই বলছি এবং আমিই এসব ঘটাব!” 37 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথাগুলি বলেন, “আমি ইস্রায়েল পরিবারকে আমার কাছে আসতে দেব এবং এসব বিষয়ের জন্য তাদের আমার কাছে অনুরোধ করতে দেব| আমি তাদের বহুসংখ্যক করে দেব আর তারা একটি মেষের পালের মত হবে| 38 পবিত্র উত্সবগুলির সময় জেরুশালেম যেমন মেষপালে ও ছাগপালে পূর্ণ হয়ে যায়, সেই একই ভাবে শহরগুলো ও ধ্বংসস্তূপগুলো লোকজনে ভরে যাবে; তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু|”
1 প্রভুর পরাক্রম আমার উপর এল আর তা আমাকে বহন করে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে উপত্যকার মাঝখানে এনে দাঁড় করাল| সেই উপত্যকা মৃতের অস্থিতে পূর্ণ ছিল| 2 সেই উপত্যকার মাটিতে অনেক অস্থি পড়েছিল| প্রভু সেই অস্থির চারপাশে আমাকে হাঁটালেন| আমি দেখলাম অস্থিগুলো অত্যন্ত শুকনো| 3 তখন প্রভু, আমার সদাপ্রভু বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, এই অস্থিগুলি কি জীবন পেতে পারে?”আমি উত্তর দিলাম, “প্রভু আমার সদাপ্রভু, এই প্রশ্োনর উত্তর কেবল আপনিই দিতে পারেন|” 4 প্রভু আমার সদাপ্রভু বললেন, “আমার হয়ে ঐসব অস্থির কাছে কথা বল| বল, ‘ওহে শুকনো হাড়গোড়, প্রভুর এই বাক্য শোন! 5 প্রভু আমার সদাপ্রভু তোমাদের এই কথা বলেন: ‘দেখ আমি তোমাদের মধ্যে জীবনের শ্বাসপ্রশ্বাস পুনরায় স্থাপন করছি! 6 আমি তোমাদের শিরা ও পেশী দিয়ে গড়ব ও তোমাদের চামড়া দিয়ে ঢেকে দেব| তারপর আমি তোমাদের নিঃশ্বাস বাযু দেব আর তোমরা জীবন ফিরে পাবে; তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু|” 7 সেই জন্য আমি প্রভুর হয়ে তার বাক্য়ানুসারে অস্থিগুলোর কাছে কথা বললাম| আমি যখন কথা বলছিলাম সেই সময় খুব জোরালো একটা শব্দ শুনলাম| অস্থিগুলো খট্খট্ শব্দ করে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করল| 8 সেই খানে আমার চোখের সামনে, শিরা ও পেশী অস্থিগুলোকে ঢেকে দিল, পরে চামড়াও সেগুলো ঢেকে দিল| কিন্তু তারা নিঃশ্বাস নিতে শুরু করল না| 9 তখন প্রভু আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে বাতাসকে বল, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘হে বাযু চারিদিক থেকে এসে এই মৃতদেহগুলির মধ্যে প্রবেশ কর| তাদের মধ্যে প্রবেশ করলে তাদের জীবন ফিরে আসবে!”‘ 10 তাই প্রভু যেমনটি বলেছিলেন, তাঁর হয়ে আমি বাতাসের সাথে সেই ভাবেই কথা বললাম আর সেই মৃতদেহগুলির মধ্যে আত্মা এল| তারা জীবনে ফিরে এসে উঠে দাঁড়াল- সে এক বিশাল সেনাদল! 11 তখন প্রভু আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, এই অস্থিগুলো সমস্ত ইস্রায়েল পরিবারের মত| ইস্রায়েলের লোকরা বলে, ‘আমাদের অস্থিগুলো শুকিয়ে গেছে| আমাদের আশা শেষ হয়েছে| আমরা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছি!’ 12 তাই, তাদের বল: প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমার স্বপক্ষে একটি ভাব্বানী| তাদের বল, ‘ওহে আমার লোকরা, আমি তোমাদের কবরগুলো খুলে দেব এবং তোমাদের বের করে আনব! তারপর আমি তোমাদের ইস্রায়েলে ফিরিয়ে আনব| 13 হে আমার প্রজারা, আমি তোমাদের কবর খুলে বের করে আনলে তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| 14 আমি তোমাদের মধ্যে আমার আত্মা স্থাপন করব আর তোমরা আবার জীবন ফিরে পাবে| তখন আমি তোমাদের আবার নিজের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাব আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু| তোমরা জানবে যে আমি যা যা বলেছিলাম, তা-ই ঘটিযেছি|”‘ প্রভুই ঐসব কথা বলেছিলেন| 15 প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল, 16 “হে মনুষ্যসন্তান, একটা লাঠি নিয়ে তার উপরে এই বার্তা লেখ: ‘এই লাঠি যিহূদা ও ইস্রায়েলীয়দের অধিকারভুক্ত|’ তারপর আরেকটা লাঠি নিয়ে তাতে লেখ: ‘ইফ্রযিমের এই লাঠি যোষেফ ও তার বন্ধু ইস্রায়েলীয়দের|’ 17 তারপর ঐ দুই লাঠি পুড়বে; তোমার হাতে সে দুটো যেন একটা লাঠিতে পরিণত হয়| 18 “তোমার লোকরা এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে 19 তাদের বলো যে প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি যোষেফের লাঠিটি নেব যেটি ইফ্রযিম এবং তার বন্ধু ইস্রায়েলীয়দের হাতে আছে; তারপর সেই লাঠির সাথে আমি যিহূদার লাঠিটা জুড়ে দিয়ে একটা লাঠিতে পরিণত করব| আমার হাতে তারা একটা লাঠিতে পরিণত হবে!’ 20 “যে লাঠি দুটিতে নামগুলো লিখেছিলে সেগুলো তুমি তোমার হাতে নাও এবং তাদের সামনে ধরো| 21 লোকদের বলো, প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘ইস্রায়েলের লোকে যে যে জাতির মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে আমি তাদের সেখান থেকে আনব| আমি তাদের চারদিক থেকে জড়ো করে তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে আনব| 22 ইস্রায়েলের পর্বতময় দেশে আমি তাদের এক জাতিতে পরিণত করব| তাদের সবার এক রাজা হবে| তারা আর দুটি জাতি হয়ে থাকবে না আর দুই রাজ্যে বিভক্ত হয়ে থাকবে না| 23 তারা তাদের ভ্রান্ত দেবদেবী, ভয়ঙ্কর মূর্ত্তিগুলি ও অপরাধ দ্বারা নিজেদের অবমাননা করবে না| কিন্তু আমি তাদের সেই সমস্ত স্থান থেকে রক্ষা করব যেখানে তারা পাপ করত| আমি তাদের ধুয়ে শুচি শুদ্ধ করব| তারা আমার লোক হবে এবং আমি তাদের ঈশ্বর হব| 24 “‘আমার দাস দাযূদ তাদের রাজা হবে| তাদের সকলের একটি মাত্র মেষপালক আছে| তারা আমার নিয়ম মেনে চলবে ও বিধি পালন করবে এবং আমার কথা অনুসারে কাজ করবে| 25 আমি আমার দাস যাকোবকে যে দেশ দিয়েছিলাম সেই দেশে তারা বাস করবে| তোমাদের পূর্বপুরুষরা যে দেশে বাস করতেন, আমার লোকরা সেখানেই বাস করবে| সেখানে তারা, তাদের সন্তানরা ও তাদের পৌত্র-পৌত্রীরা এবং তাদের ভবিষ্যতের সমস্ত প্রজন্ম বাস করবে আর আমার দাস দাযূদ হবে তাদের চির কালের নেতা| 26 আর আমি তাদের সঙ্গে একটি শান্তির চুক্তি করব| সেই চুক্তি হবে চিরকালীন চুক্তি| আমি তাদের আশীর্বাদ করব আর তারা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে এবং আমার পবিত্র স্থান চির কাল তাদের মধ্যে থাকবে| 27 আমার পবিত্র তাঁবু তাদের সাথেই থাকবে| হ্যাঁ, আমি তাদের ঈশ্বর হব আর তারা আমার লোক হবে| 28 অন্য জাতিরা জানবে যে আমিই প্রভু আর এও জানবে যে আমার পবিত্র-স্থান চির কালের জন্য ইস্রায়েলের মধ্যে রেখে আমি সেই জাতিকে আমার বিশেষ লোক করে তুলেছি|”‘
1 প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল, 2 “হে মনুষ্যসন্তান, মাগোগ দেশে গোগের দিকে দেখ| সে মেশক ও তূবল জাতির বিখ্যাত নেতা| আমার হয়ে গোগের বিরুদ্ধে কথা বল| 3 তাকে বল প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘গোগ তুমি মেশক ও তূবলের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিন্তু আমি তোমার বিরুদ্ধে| 4 আমি তোমায় বন্দী করে ফিরিয়ে আনব| তোমার সেনাদলের সমস্ত লোক জনকেও ফিরিয়ে আনব| আমি তোমার অশ্ব ও অশ্ব সৈন্য ফিরিয়ে আনব| আমি তোমার মুখে বঁড়শি বিঁধে তোমায় ফিরিয়ে আনব| সমস্ত সেনারা সাজ পোশাক পরা অবস্থায় তাদের ঢাল, তরবারি সমেত ফিরে আসবে| 5 পারস্য, কূশ এবং পূটের সৈন্যরা বর্ম ও শিরস্ত্রাণ পরে তাদের সঙ্গে থাকবে| 6 সেখানে গোমর তার সেনাদলের সাথে থাকবে| সুদূর উত্তরের তোগর্ম্মের কুল ও তার সেনাদলও থাকবে| সেই বন্দীদলের কুচকাওযাজ করা লোকরা সংখ্যায় বহু| 7 “‘তৈরী থাক, হ্যাঁ নিজেকে এবং তোমার সাথে যে সেনাদল যোগ দিয়েছে তাদের তৈরী রাখ| তোমার অবশ্যই নজর রাখা ও প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন| 8 বহু দিন পরে তোমাকে কাজে ডাকা হবে| পরের বছরগুলিতে তুমি সেই দেশে ফিরে আসবে, যে দেশ যুদ্ধের ক্ষত থেকে অসুস্থ হয়েছে| সেই দেশের লোকদের বহু জাতি থেকে জড়ো করে ইস্রায়েল পর্বতে আনা হয়েছিল| অতীতে ইস্রায়েলের পর্বত বারে বারে ধ্বংস করা হলেও অন্য জাতির মধ্য থেকে ফিরে আসা ঐ লোকরা সবাই নির্ভয়ে বাস করবে| 9 কিন্তু তুমি তাকে আক্রমণ করতে আসবে| সমস্ত দেশকে মেঘের ঘন কালো আকাশে ঢেকে ফেলার মত ঢেকে ফেলে, তুমি ঝড়ের মত আসবে| তুমি এবং তোমার সৈন্যরা যারা বিভিন্ন দেশ থেকে একত্র হয়েছিল তাদের আক্রমণ করবে|”‘ 10 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: “সেই সময় তোমার মনে এক চিন্তা আসবে, তুমি দুষ্ট পরিকল্পনা করতে শুরু করবে|” 11 তুমি বলবে, ‘আমরা গিয়ে সেই প্রাচীরহীন শহর আক্রমণ করব| ঐ লোকেরা শান্তিতে বাস করে, নিজেদের নিরাপদ মনে করে| তাদের রক্ষার জন্য শহর প্রাচীরে ঘেরা নয়| তাদের দরজায তালার ব্যবস্থা নেই, এমনকি, কপাট বলতেও কিছু নেই| 12 তোমার অভিপ্রায় এই| আমি ঐ লোকদের পরাজিত করব ও তাদের মূল্যবান জিনিস কেড়ে নেব| ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল কিন্তু পুনরায় লোক জন দ্বারা অধিকৃত অঞ্চলগুলির বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ করব| আমি ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব যারা বিভিন্ন জাতি থেকে এসে একত্র হয়েছিল| ঐ লোকদের গোপাল ও অন্যান্য ধনসম্পদ রয়েছে| তারা পৃথিবীর কেন্দ্র বাস করে| বলবান জাতিদের অন্য শক্তিশালী দেশে যাবার জন্য ঐ স্থান দিয়ে ভ্রমণ করতে হয়|’ 13 “শিবা, দদান, তর্শীশের সমস্ত ব্যবসাযীরা এবং আর যে নগরের সাথেই তারা ব্যবসা করে তারা এসে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমরা কি মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী লুঠ করতে এসেছ? তোমরা কি তোমাদের সেনাদল নিয়ে ঐসব উত্তম জিনিস ছিনিয়ে নেবার জন্য ও সোনা, রূপা, গরু, মোষ ও সম্পত্তি লুঠ করতে এসেছ? তোমরা কি সমস্ত মূল্যবান জিনিস নিয়ে নিতে এসেছ?”‘ 14 ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে গোগের সাথে কথা বল| তাকে বল প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘আমার প্রজারা যে সময় শান্তিতে ও নিরাপদে রয়েছে সে সময় তোমরা আমার প্রজাদের আক্রমণ করতে আসবে|” 15 তুমি তোমার সুদূর উত্তরের নিবাস থেকে বহুজনকে সাথে করে আনবে| তারা সবাই ঘোড়ায় চড়ে আসবে| তুমি এক বিশাল ও বলবান সেনাদল হবে| 16 তোমরা ইস্রায়েল, আমার লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে| তোমরা ঝঞ্ঝার মেঘের মত সেই দেশ ঢেকে ফেলার জন্য আসবে| যখন সময় হবে, আমি তোমাদের আমার দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য আনব| তখন সমস্ত জাতি জানবে যে আমি কত শক্তিশালী! তারা আমাকে সম্মান করতে শিখবে এবং জানবে যে আমি কত পবিত্র| তোমার প্রতি আমি যা করব তা তারা দেখবে!”‘ 17 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “সেই সময়, লোকে স্মরণ করবে যে আমি অতীতে তোমার সম্বন্ধে বলেছিলাম| তারা এও স্মরণ করবে যে আমি আমার দাসসমূহ, ভাব্বাদীদের ব্যবহার করেছিলাম| তারা স্মরণ করবে যে অতীতে ইস্রায়েলের ভাব্বাদীরা বলেছিল যে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে তোমাকে নিয়ে আসব|” 18 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “সেই সময়ে গোগ ইস্রায়েল দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে আর তখন আমি আমার রোধ প্রকাশ করব| 19 আমার রোধ ও অন্তর্জালায আমি এই প্রতিশ্রুতি করছি: ইস্রায়েলে এক প্রচণ্ড ভূমিকম্প হবে| 20 সেই সময়, সমস্ত জীবজন্তু ভয়ে কাঁপবে| সমুদ্রের মাছ, আকাশের পাখি, মাঠের পশুরা এবং সমস্ত সরীসৃপ ভয়ে কাঁপবে| পর্বতগুলি পড়ে যাবে, চূড়োগুলো ধ্বংস হবে আর প্রাচীরগুলো মাটিতে ভেঙ্গে পড়বে!” 21 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আর ইস্রায়েলের পর্বতে আমি গোগের বিরুদ্ধে সব রকমের আতঙ্ক আনব| তার সৈন্যরা এত ভীত হবে যে একে অপরকে আক্রমণ করে হত্যা করবে|” 22 আমি রোগ ও মৃত্যু দ্বারা গোগকে শাস্তি দেব| আমি শিলাবৃষ্টি, অগ্নি এবং গন্ধক গোগের প্রতি ও বহুজাতি থেকে সংগৃহীত তার সেনাদলের প্রতি বর্ষাব| 23 তখন আমি আমার মহত্ব ও পবিত্রতার প্রমাণ দেব| তখন অনেক জাতি আমার পরিচয পেয়ে আমাকেই প্রভু বলে জানবে|”
1 “মনুষ্যসন্তান আমার হয়ে গোগের বিরুদ্ধে এই কথা বল| বল প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘হে গোগ, তুমি মেশক ও তূবলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিন্তু আমি তোমার বিরুদ্ধে|” 2 আমি তোমাকে বন্দী করে ফেরত আনব| আমি তোমায় সুদূর উত্তর থেকে ইস্রায়েলের পর্বতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আনব| 3 কিন্তু আমি তোমার বাম হাত থেকে ধনুক সরিয়ে দেব আর ডান হাত থেকে তোমার তীরগুলি খসিযে দেব| 4 তুমি ইস্রায়েলের পর্বতে নিহত হবে| তুমি, তোমার সেনাদল এবং তোমার সঙ্গের সমস্ত লোকজন যুদ্ধে নিহত হবে| আমি তোমাকে সব রকমের পাখি ও বন্য পশুদের খাদ্য হিসাবে দেব| 5 তুমি শহরে প্রবেশ করবে না| তোমাকে খোলা মাঠে হত্যা করা হবে| একথা আমিই বলেছি|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন| 6 ঈশ্বর বলেছেন, “আমি মাগোগ ও সমুদ্রের উপকূলে বসবাসকারী সমস্ত লোকদের উপরে আগুন পাঠাব| তারা মনে করে যে তারা নিরাপদে আছে কিন্তু তারা জানবে যে আমিই প্রভু| 7 আমি আমার পবিত্র নাম ইস্রায়েলে জ্ঞাত করব, আমি তাদের দ্বারা আমার নাম আর অপবিত্র হতে দেব না| জাতিগণ জানবে যে আমিই প্রভু, আমিই ইস্রায়েলের পবিত্র একজন| 8 দেখ, সেই সময় আসছে যখন তা সিদ্ধ হবে! প্রভুই এইসব কথা বলেছেন| সেই দিনের কথাই আমি বলছি| 9 “সেই সময় ইস্রায়েলের শহরে বসবাসকারীরা বাইরে মাঠে যাবে| তারা শএুদের ঢাল, ধনুক, তীর, লাঠি ও বর্শা এই সমস্ত অস্ত্র সংগ্রহ করে তা পুড়িয়ে ফেলবে| তারা সাত বছর ধরে সেই সমস্ত কাঠ জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করবে| 10 তাদের আর মাঠ থেকে কাঠ কুড়াতে বা বন থেকে কাঠ কেটে আনতে হবে না কারণ তারা অস্ত্র-শস্ত্রই জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করবে| তারা লুঠ করতে আসা সৈন্যদের কাছ থেকে তাদের মূল্যবান দ্রব্যই কেড়ে নেবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন| 11 ঈশ্বর বলেন “সেই সময়, আমি গোগকে কবর দেবার জন্য ইস্রায়েলে একটি স্থান বেছে নেব| পথিকদের উপত্যকায়, যে স্থান মৃত সাগরের পূর্ব দিকে অবস্থিত সেখানে তাকে কবর দেওয়া হবে| তা পথিকদের পথ অবরোধ করবে| কারণ গোগ ও তার সেনাদল সেইস্থানে কবরস্থ হবে| লোকে সেই স্থানকে ‘গোগ এর সৈন্যদের উপত্যকা হিসেবেও অভিহিত করবে|’ 12 দেশ শুচি করার জন্য ইস্রায়েলের পরিবার সাত মাস ধরে তাদের কবরে দেবে| 13 দেশের সাধারণ লোক ঐসব শএু সেনাদের কবর দেবে| আমি যেদিন নিজেকে গৌরবান্বিত করব সেদিন ঐ লোকেরা বিখ্যাত হয়ে উঠবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন| 14 ঈশ্বর বলেন, “কর্মীরা সমস্ত দিন ধরে ঐ মৃত সৈন্যদের কবরস্থ করবে যাতে দেশ শুচি হয়| ঐ কর্মীরা সাত মাস ধরে পরিশ্রম করবে| পরে মৃত দেহের জন্য এদিকে ওদিকে অনুসন্ধান করবে|” 15 সেই সব কর্মীরা খুঁজতে খুঁজতে এধারে ওধারে যাবে| তাদের মধ্যে যদি কেউ এক টুকরো অস্থি দেখে তবে তার ধারে চিহ্ন দিয়ে রাখবে| যতক্ষণ পর্য়ন্ত না কবর খোঁড়ার লোক এসে গোগ সেনাদের উপত্যকায় তা কবর না দেয় সেই পর্য়ন্ত সেই চিহ্ন দেওয়া থাকবে| 16 মৃত লোকদের নগরের নাম হবে হামোনা| এই ভাবে তারা সেই দেশ শুদ্ধ করবে|” 17 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “হে মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে সমস্ত পাখি ও বন্য পশুর সাথে কথা বল| তাদের বল, ‘এখানে এস! এখানে এস! এসে চারধারে জড়ো হও| তোমাদের জন্য আমি যে বলি প্রস্তুত করেছি তা ভক্ষণ কর| ইস্রায়েলের পর্বতে এক মহায়জ্ঞ হবে| এস মাংস খাও, রক্ত পান কর| 18 তোমরা বলবান সৈন্যের দেহ হতে মাংস খাবে ও পৃথিবীর নেতাদের রক্ত পান করবে| তারা সকলে বাশনের পাঁঠা, মেষশাবক, ছাগল ও মোটা সোটা ষাঁড়| 19 তোমরা যতটা চাও ততটাই মেদ খেতে পারো, পূর্ণ না হওয়া পর্য়ন্ত রক্ত পান করতে পারো| আমি তোমাদের জন্য যে বলি হনন করেছি তা তোমরা খাবে ও পান করবে| 20 আমার টেবিল থেকে খাবার জন্য তোমাদের জন্য প্রচুর মাংস থাকবে| থাকবে অশ্ব, রথচালকগণ, বলবান সৈন্যরা এবং অন্য সব যোদ্ধারা|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐ কথা বলেছেন| 21 ঈশ্বর বললেন, “আমি অন্য জাতিদের আমার কাজ দেখাব আর তারা আমায় সম্মান করতে শুরু করবে! শএুদের বিপক্ষে আমি যে শক্তি ব্যবহার করেছি তাও তারা দেখবে| 22 সেই দিন থেকেই ইস্রায়েল পরিবার জানবে যে আমিই তাদের প্রভু ও ঈশ্বর| 23 জাতিগণ জানবে কেন ইস্রায়েল পরিবারকে বন্দী করে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| তারা জানবে আমার লোকরা আমার বিরুদ্ধে উঠেছিল বলেই আমি তাদের থেকে ঘুরে দূরে গিয়েছিলাম| আমি তাদের শএু দ্বারা পরাজিত হতে দিলাম বলেই আমার লোকরা যুদ্ধে নিহত হল| 24 তারা পাপে নিজেদের অশুচি করল, তাই তাদের কাজের জন্য আমি শাস্তি দিলাম| আমি তাদের থেকে দূরে গেলাম ও তাদের সাহায্য করতে অস্বীকার করলাম|” 25 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “এখন আমি যাকোবের পরিবারকে বন্দীত্ব থেকে নিয়ে আসব| আমি সমস্ত ইস্রায়েল পরিবারের প্রতি দয়া করব| আমি আমার পবিত্র নামের পক্ষে উদ্য়োগী হব| 26 তারা সবসময় যে আমার বিরুদ্ধাচরণ করত এই লজ্জা লোকরা ভুলে যাবে| তারা নিজেদের দেশে নিরাপদে থাকবে কেউ তাদের ভয় দেখাবে না| 27 আমি অন্য দেশ থেকে আমার প্রজাদের ফিরিয়ে আনব| আমি শএুদের দেশ থেকে তাদের সংগ্রহ করব, তখন বহু জাতি দেখতে পাবে যে আমি কত পবিত্র| 28 তারা জানবে যে আমিই প্রভু, তাদের ঈশ্বর, কারণ আমিই তাদের ঘর বাড়ী ছেড়ে অন্য দেশে বন্দী হিসেবে যেতে বাধ্য করেছিলাম| আর আমিই তাদের আবার একত্র করে তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে এনেছি| তাদের এক জনও পেছনে পড়ে থাকবে না| 29 আমি ইস্রায়েল পরিবারের উপর আমার আত্মা ঢেলে দেব আর সেই সময়ের পরে আর কখনও আমার প্রজাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব না|” প্রভু আমার সদাপ্র ভুই এই সব কথা বলেন|
1 নির্বাসনে যাবার পঁচিশতম বছরের শুরুতে অর্থাত্ মাসের দশম দিনে প্রভুর শক্তি আমার উপর এল| এ হল বাবিলীযরা জেরুশালেম অধিকার করার চৌদ্দ বছর পরের কথা| সেই দিন প্রভু দর্শনে আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন| 2 একটি দর্শনে, ঈশ্বর আমাকে ইস্রায়েল দেশে বহন করে নিয়ে গিয়ে এক উঁচু পর্বতের কাছে নামিয়ে দিলেন| সেই পর্বতের ওপর আমার চোখের সামনে শহরের মত দেখতে একটি অট্টালিকা ছিল| 3 প্রভু আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন| সেখানে, ঘসা মাজা পিতলের মত চক্চক্ করছে এমন এক জন পুরুষকে দেখলাম| সেই লোকটির হাতে মাপার জন্য ফিতে ও লাঠি ছিল| তিনি ফটকের ধারেই দাঁড়িয়ে ছিলেন| 4 সেই পুরুষ আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, তোমার চোখ ও কান ব্যবহার কর| ঐসব জিনিসের দিকে দেখ ও আমার কথা শোন| আমি তোমায় যা দেখাই তাতে মন দাও হ্কারণ তোমাকে ঐসব দেখাবার জন্যই এখানে আনা হয়েছে| তুমি যা দেখবে তা অবশ্যই ইস্রায়েল পরিবারকে জানিও|” 5 আমি একটা দেওয়াল দেখলাম যা মন্দিরের বাইরে মন্দিরকে চারধারে ঘিরে ছিল| সেই পুরুষটির হাতে ছিল মাপার মাপকাঠি| লম্বা হাতের মাপ অনুসারে তা ছিল 6 হাত লম্বা| পুরুষটি যখন দেওয়ালের প্রস্থ মাপলো তা এক মাপকাঠির সমান হল আর প্রাচীরের উচ্চতাও এক মাপকাঠির সমান হল| 6 তারপর সেই পুরুষটি পূর্ব দিকের দরজার কাছে গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে সেই দরজার মুখের চওড়াটা মাপল, তা মাপে এক মাপকাঠি হল| 7 রক্ষীদের ঘরগুলি ছিল মাপে লম্বায় এক মাপকাঠি ও চওড়ায় এক মাপকাঠি| ঘরগুলির মধ্যের দেওয়াল চওড়ায় 5 হাত ছিল| প্রবেশ পথের বারান্দার দিকের মুখটি যেটি মন্দিরের দিকে মুখ করে ছিল তাও প্রস্থে এক মাপ কাঠি| 8 তারপর সেই পুরুষটি বারান্দাটি মাপলেন| 9 তা লম্বায় 8 হাত হল| পুরুষটি দরজার দুধারের দেওয়ালও মাপল| প্রত্যেক পাশের দেওয়াল চওড়ায় 2 হাত হল| বারান্দাটি মন্দিরের দিকে মুখ করে প্রবেশ পথের শেষে ছিল| 10 প্রবেশ পথের দুইধারে তিনটি করে ছোট ছোট ঘর ছিল| প্রত্যেকটা ঘরের মাপ এক এবং তাদের পাশের দেওয়ালগুলোও মাপে এক ছিল| 11 পুরুষটি প্রবেশ পথের মুখটি মাপল| সেটা ছিল প্রস্থে 10 হাত এবং লম্বায় 13 হাত| 12 প্রত্যেকটি ঘরের সামনে একটি নীচু প্রাচীর ছিল; সেই প্রাচীর দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থেথ ছিল 1 হাত| ঘরগুলো ছিল বর্গাকৃতি| প্রতিটি দেওয়াল ছিল 6 হাত| 13 পুরুষটি একটি ঘরের ছাদের কোণ থেকে অপর ঘরের ছাদের কোণ পর্য়ন্ত প্রবেশপথটি মাপলে তা মাপে 25 হাত হল| প্রত্যেকটি দরজা অপর দরজার বিপরীত ছিল| 14 পুরুষটি পাশের দেওয়ালগুলির প্রত্যেকটি পাশ, এমনকি গাড়ী-বারান্দার দুই ধারের দেওয়ালগুলিও মাপল| সর্বসমেত মাপ ছিল 60 হাত| 15 বাইরের দরজার ভিতরের ধার থেকে দূরের বারান্দার প্রান্তটি ছিল 50 হাত| 16 সব কটি রক্ষীদের ঘরের ওপরে পাশের দিকে দেওয়ালে ও অলিন্দে ছোট ছোট জানালা ছিল| জানালাগুলির চওড়া দিকটা রাস্তার দিকে মুখ করে ছিল| পাশের দিকের দেওয়ালগুলোতে এবং ঝুল বারান্দায খেজুর গাছের ছবি খোদাই করে অাঁকা ছিল| 17 তারপর পুরুষটি আমাকে বাইরের প্রাঙ্গণে নিয়ে গেল| আমি সেই প্রাঙ্গণের চারধারে ত্রিশটি ঘর ও পাথরে বাঁধানো ভূমি দেখতে পেলাম| ঘরগুলি দেওয়ালের ধারে ও প্রস্তরে বাঁধানো ভূমির দিকে মুখ করে ছিল| 18 দরজাটি লম্বায় যতখানি, প্রস্তরে বাঁধানো ভূমিটি প্রস্থে ততখানিই ছিল| পাথরে বাঁধা ভূমিটি প্রবেশ পথের ভেতরের দিকের শেষ পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল| এটা ছিল নীচের শান বাঁধানো জায়গা| 19 পুরুষটি নীচের প্রবেশ পথের ভেতরের দিক থেকে ভেতরের প্রাঙ্গনের বাইরেটা পর্য়ন্ত মাপলে তা মাপে পূর্বদিকে ও উত্তরে 100 হাত হল| 20 তারপর, সেই পুরুষটি বাইরের প্রাঙ্গন ঘিরে যে দেওয়াল, সেই দেওয়ালের উত্তর দিকে যে ফটক ছিল তা দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থেথ মাপল| 21 এই প্রবেশ পথ তার দুপাশের তিনটে করে ঘর এবং তার বারান্দা সবই মেপে প্রথম দরজাটার মত হল| প্রবেশ পথটি দৈর্য়্ঘে 50 হাত ও প্রস্থে 25 হাত হল| 22 এর জানালাগুলি, বারান্দা এবং খোদিত খেজুর গাছের চিত্রের মাপজোক সব আগের দরজার মতই ছিল| বাইরের দিক থেকে সাতটি ধাপ সেই দরজার কাছে পৌঁছে দিত এবং এর বারান্দা ছিল প্রবেশ পথের ভিতরের দিকটার শেষ পর্য়ন্ত| 23 প্রাঙ্গণের উত্তর দিকের দরজা বরাবর ভিতরের প্রাঙ্গণে খাবার জন্য একটি দরজা ছিল| এ দরজা পূর্বের দিকের দরজার মতই ছিল| পুরুষটি ভেতরের দিকের দেওয়ালের দরজা থেকে বাইরের দিকের দেওয়ালের দরজা মাপল| দরজা থেকে দরজার মাপ ছিল 100 হাত| 24 তারপর পুরুষটি আমাকে দক্ষিণের দিকের দেওয়ালে নিয়ে গেল| সেখানে আর একটি ফটক ছিল| পুরুষটি সেটার পাশের দেওয়ালগুলির ও বারান্দার মাপ নিল| এদের মাপ অন্য দরজাগুলির মাপের সমান হল| 25 প্রবেশ পথে ও তার বারান্দায অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির মত জানালা ছিল| প্রবেশ পথটির মাপ দৈর্য়্ঘে 50 হাত ও প্রস্থেথ 25 হাত| 26 এই প্রবেশ দ্বারটির সামনে সাতটি ধাপ ছিল| এর বারান্দাটি ছিল প্রবেশ পথের ভেতরের দিক থেকে শেষ পর্য়ন্ত| দরজার পথের দুই ধারের দেওয়ালে খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল| 27 ভেতরের প্রাঙ্গণের দক্ষিণ দিকে একটি প্রবেশদ্বার ছিল| সেই পুরুষটি ভেতরের দিকের দেওয়ালের দরজা থেকে বাইরের দিকের দেওয়ালের দরজা পর্য়ন্ত মাপলে তা দরজা থেকে দরজা পর্য়ন্ত 100 হাত হল| 28 তারপর সেই পুরুষটি দক্ষিণ দিকের প্রবেশদ্বার দিয়ে আমায় ভিতরের প্রাঙ্গণে আনল| সে এই প্রবেশ পথটি মাপলে তা ভিতরের প্রাঙ্গণের আসার অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির সমান হল| 29 এর লাগোযা ঘরগুলি, পাশের দেওয়াল এবং বারান্দার মাপ ও অন্য দরজাগুলির সমান হল| প্রবেশ পথের ও বারান্দার চারদিকেই জানালা ছিল| প্রবেশ পথটি দৈর্য়্ঘে 50 হাত ও প্রস্থেথ 25 হাত ছিল| 30 বারান্দাটি প্রস্থে 25 হাত ও দৈর্য়্ঘে 5 হাত ছিল| 31 এবং এর বারান্দা ছিল দরজার পথের শেষে বাইরের প্রাঙ্গণের গায়ে| প্রবেশ পথের দুই পাশের দেওয়ালে খেজুর গাছের চিত্র খোদাই করা ছিল| আটটা সিঁড়ির ধাপ পার হলেই সেই দরজা| 32 তখন সেই পুরুষটি আমাকে পূর্ব দিকের ভিতরের প্রাঙ্গণে নিয়ে চলল| সে প্রবেশ দ্বারটি মাপলে তা অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির সমান হল| 33 এর ঘরগুলি, পাশের প্রাচীর ও বারান্দার মাপগুলি অন্য প্রবেশ দ্বারের সমান ছিল| প্রবেশ পথের ও বারান্দার চারদিকে অনেক জানালা ছিল| প্রবেশ পথটি লম্বায় 50 হাত ও চওড়ায় 25 হাত ছিল| 34 এবং প্রবেশ পথের শেষে ভিতরের প্রাঙ্গণেই ছিল এর বারান্দা| প্রবেশ পথের দুই পাশেই ছিল খোদাই করা খেজুর গাছের আকৃতি| আটটি ধাপ পার হলেই সেই দরজায পৌঁছানো যেত| 35 তখন সেই পুরুষটি আমায় উত্তর দিকের প্রবেশদ্বারের দিকে নিয়ে চলল| সেটা মাপা হলে তার মাপ অন্য দ্বারগুলির সমান হল| 36 এর ঘরগুলি, পাশের দেওয়াল ও বারান্দার মাপগুলিও অন্য দ্বারগুলির সমান হল| প্রবেশ পথের ও তার বারান্দার চারধারে অনেক জানালা ছিল| প্রবেশ পথটি মাপে দৈর্য়্ঘে 50 হাত ও প্রস্থেথ 25 হাত| 37 এবং এর বারান্দাটি ছিল প্রবেশ পথের শেষে বাইরের প্রাঙ্গণের গায়ে| প্রবেশ পথের দুই পাশের দেওয়ালে খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল| আটটি ধাপ পার হলেই সেই ফটক| 38 সেখানে একটি ঘর ছিল যার দরজা খুললে এই ফটকের বারান্দায এসে পড়ে| এই হল সেই জায়গা যেখানে যাজকরা হোমবলির জন্য পশু ধোয| 39 এই বারান্দার দুই দিকে দরজার দুইধারে দুটি টেবিল ছিল| হোমবলি, পাপমোচন নৈবেদ্য, এবং অপরাধ মোচন নৈবেদ্য়ের জন্য পশুদের এই টেবিলেই হত্যা করা হত| 40 এই বারান্দার বাইরে দরজার প্রতি পাশে দুটি করে টেবিল ছিল| 41 সুতরাং ভিতরের দেওয়ালের দিকে চারটি টেবিল এবং বাইরের দেওয়ালের দিকে চারটে টেবিল- মোট আটটি টেবিল যাজকরা নৈবেদ্য়ের নিমিত্তে পশু বলি দেবার জন্য ব্যবহার করত| 42 হোমবলির জন্যও পাথর কেটে তৈরী করা চারটি টেবিল ছিল| এই টেবিলগুলি মাপে 1.5 হাত লম্বা, 1.5 হাত চওড়া ও 1 হাত উঁচু| এই টেবিলের উপরে হোমবলি ও অন্যান্য নৈবেদ্য নিমিত্ত পশু বলি দেবার যন্ত্রপাতিও রাখা হত| 43 এই জায়গায় দেওয়ালের গায়ে মাংস ঝোলাবার জন্য তিন ইঞ্চি লম্বা আংটাসমূহ ছিল| উত্সর্গের মাংস টেবিলগুলির ওপর রাখা হত| 44 ভিতরের প্রাঙ্গণে যাজকদের জন্য দুটি ঘর ছিল|একটি উত্তর দিকের ফটকের পাশে দক্ষিণ দিকে মুখ করে| অন্যটি দক্ষিণ দিকে ফটকের পাশে উত্তর দিকে মুখ করে| 45 সেই পুরুষটি আমায় বলল, “দক্ষিণ দিকে মুখ করে যে ঘরটি সেটি মন্দিরের চত্বরে সেবায রত যাজকদের জন্য|” 46 কিন্তু উত্তর দিকে মুখ করা ঘরটি সেই সব যাজকদের জন্য যারা বেদীতে পরিচর্য়ার কাজ করে| যাজকরা লেবী পরিবারগোষ্ঠীর কিন্তু যাজকদের এই দ্বিতীয় দল সদোকের উত্তরপুরুষ| তারাই একমাত্র যারা প্রভুর সেবার্থে বলি বেদীতে বয়ে নিয়ে যেতে পারে| 47 পুরুষটি ভিতরের প্রাঙ্গণটি মাপলে দেখা গেল তা এক প্রকৃত বর্গক্ষেত্র| দৈর্য়্ঘে তা 100 হাত এবং প্রস্থেথও তা 100 হাত ছিল| বেদীটি মন্দিরের সামনে অবস্থিত ছিল| 48 তারপর সেই ব্যক্তিটি আমায় মন্দিরের দক্ষিণ গাড়ী বারান্দায নিয়ে গিয়ে দুই ধারের দেওয়াল মাপল| প্রতি পাশের দেওয়াল ছিল 5 হাত পুরু ও 3 হাত চওড়া| এবং তাদের মধ্যকার ব্যবধানের মাপ ছিল 14 হাত| 49 বারান্দাটি প্রস্থেথ 20 হাত ও দৈর্য়্ঘে 12 হাত, দশ ধাপ সিঁড়ি উঠে গিয়েছিল বারান্দা পর্য়্য়ন্ত| বারান্দার দুই পাশের দেওয়ালগুলির জন্য প্রতি দেওয়ালে একটি করে, মোট দুটি থাম ছিল|
1 এরপর সেই পুরুষটি আমায় পবিত্রস্থানের দিকে নিয়ে চলল| সে সেই ঘরের দুই ধারের দেওয়াল মাপল| প্রতি পাশের দেওয়ালগুলি 6 হাত পুরু ছিল| 2 দরজাটি প্রস্থে 10 হাত এবং দরজার সম্মুখের পথটির ধারগুলির প্রতি পাশে 5 হাত ছিল| পুরুষটি সেই ঘরটির মাপ নিলে তা লম্বায় 40 হাত এবং চওড়ায় 20 হাত পাওয়া গেল| 3 তারপর সেই পুরুষটি শেষের ঘরে গেল এবং দরজার পথটির দুই ধারের দেওয়ালের মাপ নিল| প্রত্যেক পাশের দেওয়াল 2 হাত পুরু ও প্রস্থে 7 হাত পাওয়া গেল| দরজার দিকের রাস্তাটি প্রস্থে 6 হাত ছিল| 4 তারপর পুরুষটি সেই ঘরটির দৈর্য়্ঘ মাপলো এবং তা ছিল লম্বায় ও চওড়ায় 20 হাত মাপের| সেই পুরুষটি আমায় বলল, “এইটি সর্বাপেক্ষা পবিত্র স্থান|” 5 তারপর সেই পুরুষটি মন্দিরের দেওয়ালের মাপ নিলে তা 6 হাত পুরু পাওয়া গেল| মন্দিরের চারধারে পাশে পাশে অনেক কামরা ছিল যারা প্রস্থে 4 হাত ছিল| 6 পার্শ্ব কামরাগুলি ছিল একটার ওপরে আরেকটা এবং এই ভাবে তিনটি বিভিন্ন তলে ছিল| প্রতিটি তলায় 30টি করে ঘর ছিল| মন্দিরের দেওয়ালটি এমন ভাবে গড়া যে তাতে সঙ্কীর্ণ তাক ছিল| এই সঙ্কীর্ণ তাকের উপরেই পাশের কামরাগুলি তৈরী করা হয়েছিল, কিন্তু মন্দিরের দেওয়ালের সঙ্গে তাদের কোন যোগ ছিল না| 7 মন্দিরের চারধারের পার্শ্ব কামরাগুলির প্রতিটির মেঝে তার নীচের তলার মেঝের থেকে চওড়া ছিল| মন্দিরের চারধারের কামরাগুলির দেওয়ালগুলি উপরের দিকে যতই উঠল ততই সরু হতে থাকল ফলে উপরের তলার কামরাগুলি চওড়া ছিল| নীচের তলা থেকে উপর তলা পর্য়ন্ত মাঝের তলা দিয়ে একটা সিঁড়ি উঠে গেছিল| 8 আমি এও দেখলাম যে মন্দিরের মেঝের চারদিক উঁচু| এটা ছিল পাশের কামরাগুলির ভিত, এবং উচ্চতায় 6 হাত| 9 পাশের কামরাগুলির বাইরের দেওয়ালগুলো ছিল 5 হাত পুরু| এক খোলা জায়গা মন্দিরের পাশের কামরাগুলির ও 10 যাজকদের কামরার মাঝে ছিল| এটা প্রস্থেথ 20 হাত এবং মন্দিরের চারধারে বিস্তৃত ছিল| 11 পাশের কামরার দরজাগুলি ঐ উঁচু জমিতে খুলত| উত্তর দিক দিয়ে ও দক্ষিণের দিক দিয়ে প্রবেশ পথ ছিল| উঁচু জমিটি চার ধারে চওড়ায় 5 কিউবিট ছিল| 12 মন্দিরের পশ্চিম দিকে, এই সীমাবদ্ধ স্থানটিতেএকটি অট্টালিকা ছিল| অট্টালিকাটি প্রস্থেথ 70 হাত ও দৈর্য়্ঘে 90 হাত মাপের ছিল| প্রাঙ্গণের দেওয়াল চার ধারেই 5 হাত করে পুরু ছিল| 13 তারপর পুরুষটি সেই মন্দিরটি মাপল| মন্দিরটি মাপে 100 হাত লম্বা হল| দালান ও দেওয়াল সমেত জায়গাটিও লম্বায় 100 হাত হল| 14 মন্দিরের সামনে পূর্ব দিকের সীমাবদ্ধ জায়গাটি লম্বায় 100 হাত ছিল| 15 পুরুষটি পশ্চিমদিকে, সীমাবদ্ধ স্থানটি অট্টালিকাটির মাপ নিল| এক দেওয়াল থেকে অপর দেওয়াল পর্য়ন্ত তা মাপে 100 হাত হল|সর্বাপেক্ষা পবিত্র স্থান, পবিত্র স্থান ও গাড়ী বারান্দাটার যে দিকটা ভেতরের প্রাঙ্গণের দিকে মুখ করে ছিল 16 তার দেওয়ালে কাঠের তক্তা সমূহ ছিল| সমস্ত জানালা ও দরজার ধারে সরু করে কাঠ লাগানো ছিল| দরজা পথে মন্দিরের মেঝে থেকে জানালা পর্য়ন্ত এবং দেওয়ালের অংশ পর্য়ন্ত দরজা পথের ওপরে কাঠের তক্তা ছিল| 17 মন্দিরের ভিতরের ও বাইরের কামরাগুলির দেওয়ালে করূব দূত এবং খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল| 18 করূব দূতগুলির মাঝে ছিল খেজুর গাছ| প্রতিটি করূব দূতের দুটি করে মুখ ছিল| 19 করূব দূতের একটি মুখ ছিল মানুষের মত যা খেজুর গাছের দিকে মুখ করে ছিল| অন্য মুখটি সিংহের মত যা অপর দিকের খেজুর গাছের দিকে মুখ করে ছিল| এসব আকৃতি মন্দিরের চারধারে খোদাই করা ছিল| 20 মেজ থেকে দরজার উপর পর্য়ন্ত পবিত্র -স্থানের সমস্ত দেওয়ালে করূব দূত ও খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল| 21 পবিত্র স্থানের দুই ধারের দেওয়ালগুলো ছিল বর্গাকৃতি| পবিত্রতম স্থানের সামনে একটি জিনিষ ছিল যা দেখতে 22 অনেকটা কাঠের তৈরী একটি বেদীর মত যা উচ্চতায় 3 হাত ও লম্বায় 2 হাত এবং চওড়ায় 2 হাত| এর ধারগুলি এবং ভিত্তি কাঠের তৈরী ছিল| পুরুষটি আমায় বললেন, “এইটি সেই টেবিল যা প্রভুর সামনে রয়েছে|” 23 পবিত্র স্থানে ও সর্বাপেক্ষা পবিত্র স্থানে জোড়া দরজা ছিল| 24 প্রতিটি ছোট দরজা নিজের থেকে খুলে যেতে পারত| প্রতিটি দরজায প্রকৃতপক্ষে দুটি চএাকারে আবর্ত্তনশীল দরজার হাতল ছিল| 25 এছাড়াও পবিত্র স্থানের দরজাগুলিতে করূব দূত ও খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল| এগুলি দেওয়ালে খোদিত আকৃতির মত ছিল| গাড়ী বারান্দার সামনে ছিল কাঠের ছাদ| 26 সেখানকার জানালাগুলির চার ধারে কাঠামো ছিল এবং বারান্দার উভয় পাশের দেওয়ালে বারান্দার ছাদে ও মন্দিরের চার ধারের ঘরগুলিতে খেজুর গাছের আকৃতি ছিল|
1 তারপর সেই পুরুষটি উত্তর দিকের প্রবেশ দ্বারের মধ্যে দিয়ে আমাকে বাইরের প্রাঙ্গণে নিয়ে এল| সে আমাকে পশ্চিম দিকের অনেক কামরা রয়েছে এমন এক প্রাঙ্গণে নিয়ে চলল যেটি নিষিদ্ধ জায়গার পশ্চিমে এবং উত্তরের প্রাঙ্গণের দিকে ছিল| 2 পাথরের তৈরী বাড়ীটি লম্বায় 100 হাত ও চওড়ায় 50 হাত ছিল| লোক জন প্রাঙ্গণের উত্তর দিক দিয়ে এতে প্রবেশ করত| 3 পাথরের তৈরী বাড়ীটি ছিল তিনতলা উঁচু এবং তাতে ঝুল বারান্দা ছিল| 20 হাত মাপের ভিতরের প্রাঙ্গণটি ছিল ঐ বাড়ী ও মন্দিরের মধ্যস্থানে| অন্য দিকের কামরাগুলি বাইরের প্রাঙ্গণের শান বাঁধান জায়গাটির দিকে মুখ করে ছিল| 4 প্রবেশ পথটি উত্তর দিকে থাকা সত্ত্বেও, প্রস্থে 10 হাত ও দৈর্য়্ঘে 100 হাত একটি রাস্তা প্রাঙ্গণটির দক্ষিণ পাশ বরাবর চলে গিয়েছিল| 5 যেহেতু দালানটির উচ্চতায় তিনতল বিশিষ্ট ছিল এবং তাতে বাইরের প্রাঙ্গণের মত থাম ছিল না তাই উপরের কামরাগুলি মধ্যের ও তলার কামরাগুলির থেকে পিছনের দিকে ছিল| উপরের তল প্রস্থেথ মধ্যের তলের চেয়ে এবং মধ্যের তল প্রস্থে নীচের তলের চেয়ে সরু ছিল কারণ সেই স্থানে ঝুল বারান্দা ছিল| 6 7 তার বাইরে ছিল এক দেওয়াল, যা কামরাগুলির সাথে সমান্তরাল ভাবে বাইরের প্রাঙ্গণে বরাবর গিয়েছিল| কামরাগুলির সামনে তা 50 হাত পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল| 8 যে কামরাগুলি বাইরের প্রাঙ্গন বরাবর ছিল তারা দৈর্য়্ঘে 50 হাত যদিও মন্দিরের দিকের দালানটি সম্পূর্ণ দৈর্য়্ঘে 100 হাত ছিল| 9 দালানটির পূর্ব দিকে এই কামরাগুলির তলায় ছিল প্রবেশপথ আর তাই লোকে বাইরের প্রাঙ্গণ থেকে এতে প্রবেশ করতে পারত| 10 প্রবেশ পথটি ছিল প্রাঙ্গণের গায়ে দেওয়ালের আরম্ভে|দক্ষিণ দিকেও, খোলা চত্বরে কয়েকটি ঘর ছিল এবং কয়েকটি ছিল এই ঘরগুলির সামনে| 11 এই কামরাগুলির সামনে একটি সরু রাস্তা ছিল| দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থে সমান ছিল এবং একই অবস্থানে একই রকম দরজা ছিল এইগুলিতে| 12 বাড়িটির পূর্বদিকে দক্ষিণের ঘরগুলো প্রবেশের বিভিন্ন পথছিল যাতে লোকরা দেওয়ালের ধারে খোলা চত্বরের সরু রাস্তা দিয়ে এখানে প্রবেশ করতে পারে| 13 সেই পুরুষটি আমায় বলল, “সীমাবদ্ধ স্থানের এপাশের এবং ওপাশের উত্তরের ও দক্ষিণের কামরাগুলি পবিত্র| এই কামরাগুলি সেই সব যাজকদের জন্য যারা প্রভুর উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য উত্সর্গ করে| সেই স্থানেই যাজকরা পবিত্র নৈবেদ্য ভোজন করে এবং সেই স্থানেই তারা পবিত্র নৈবেদ্যগুলি রাখে কারণ এই স্থান পবিত্র| পবিত্রতম নৈবেদ্যগুলি হল: শস্য নৈবেদ্য, পাপমোচন নৈবেদ্য এবং অপরাধ খণ্ডন নৈবেদ্য| 14 যে যাজকরা পবিত্র-স্থানে প্রবেশ করে তাদের অবশ্য বাইরের প্রাঙ্গনে যাবার আগে পবিত্রস্থানে সেবার কাপড় খুলে রাখতে হবে| যাজকগণ যদি মন্দিরের অন্য অংশে, যেখানে অন্য যাজকরা রয়েছে সেখানে যেতে চায়, তবে তাকে এই ঘরে গিয়ে অন্য পোষাক পরতে হবে|” তাদের এই রকম অবশ্যই করতে হবে কারণ তাদের সেবা বস্ত্র হছে পবিত্র| 15 সেই পুরুষটি মন্দিরের ভিতরের অংশের মাপ নেওয়া শেষ করে আমাকে পূর্বের দিকের দরজার কাছে এনে সেই সমস্ত জায়গা মাপল| 16 সে পূর্বের দিক একটা মাপকাঠির সাহায্যে মাপলে তা লম্বায় 500 হাত পাওয়া গেল| 17 তিনি উত্তর দিক মাপলে তাও দৈর্য়্ঘে 500 হাত হল| 18 দক্ষিণ দিক মাপলে তাও লম্বায় 500 হাত হল| 19 পশ্চিম দিকটাও লম্বায় 500 হাত হল| 20 তারপর তিনি মন্দিরের চারধারের চারটি দেওয়াল মাপল| দেওয়ালটি লম্বায় 500 হাত এবং চওড়ায় 500 হাত ছিল| এটি পবিত্র স্থানটিকে সাধারণ স্থানের থেকে আলাদা করে রেখেছিল|
1 সেই পুরুষটি আমাকে পূর্বের দিকের প্রবেশ দ্বারের দিকে নিয়ে চলল| 2 সেখানে পূর্ব দিক থেকে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা এসে উপস্থিত হল| ঈশ্বরের রব সমুদ্রের গর্জনের মত মনে হল এবং তাঁর মহিমার আলোয ভূমি আলোকিত হল| 3 এই দর্শনটি ছিল সেটির মত যখন আমি দেখেছিলাম তিনি জেরুশালেম শহর ধ্বংস করতে এসেছিলেন এবং কবার নদীর ধারে আমি যে দর্শন দেখেছিলাম সেটার মত| 4 পূর্ব দিকের দরজা থেকে প্রভুর মহিমা মন্দিরের মধ্যে এল| 5 তারপর আত্মা আমায় তুলে নিয়ে ভেতরের প্রাঙ্গণের মধ্যে নিয়ে এল| প্রভুর মহিমা মন্দির পরিপূর্ণ হল| 6 আমি কাউকে মন্দিরের ভেতর থেকে আমার সাথে কথা বলতে শুনলাম| সেই মানুষটি তখনও আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল| 7 মন্দিরের ভেতর থেকে আসা সেই রব আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, আমার সিংহাসন ও পাদদেশ সমেত এই আমার স্থান| আমি এই স্থানে ইস্রায়েলের লোক জনের মাঝে চির কালের জন্য বাস করি| ইস্রায়েল পরিবার আমার নাম পুনরায় কলঙ্কিত করবে না| রাজারা ও তাদের প্রজারা মূর্ত্তি পূজা করবে না অথবা এই স্থানে তাদের রাজাদের মৃতদেহ কবরস্থ করে আমার নামকে লজ্জিত করবে না| 8 তারা আমার চৌকাঠের পাশে তাদের চৌকাঠ এবং আমার দরজায খুঁটির পাশে তাদের দরজার খুঁটি লাগিয়ে আমার নামকে লজ্জিত করবে না| অতীতে কেবল একটি দেওয়াল তাদের আমার কাছ থেকে পৃথক করত| তাই প্রত্যেকবার পাপ কাজ করে ও ভয়ঙ্কর ঐসব কাজ করে তারা আমার নামকে অপবিত্র করেছে| সেই জন্য আমি রুদ্ধ হয়ে তাদের ধ্বংস করেছিলাম| 9 এখন তারা তাদের য়ৌন পাপতাদের রাজাদের মৃতদেহ আমাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাক্, তাহলে আমি চির কাল তাদের সঙ্গে বাস করব| 10 “এখন হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবারকে ঐ মন্দিরের সম্বন্ধে বল| তাহলে যখন তারা সেই মন্দিরের পরিকল্পনার সম্বন্ধে জানবে তখন তারা তাদের পাপ সম্বন্ধে লজ্জিত হবে| 11 আর তাদের কৃত সমস্ত মন্দ কাজের জন্য তারা লজ্জিত হবে| তারা সেই মন্দিরের নক্শা সম্বন্ধে জানুক| জানুক কিভাবে তা গড়া যাবে, প্রবেশ দ্বার ও প্রস্থানদ্বার কোথায় সে সব এবং মন্দিরের সমস্ত নকশাটাই জানুক| তার বিষয়ে যে বিধি ও নিয়ম রয়েছে, তাও তাদের শিখিযে দিও| এবং প্রত্যেকে যেন দেখতে পায় এবং মন্দিরের বিধিসমূহ পালন করে সেই জন্য এগুলি প্রত্যেকের জন্য লেখ| 12 মন্দির সম্বন্ধে এই হল বিধি: এই সীমানার মধ্যবর্তী যে পাহাড়, তার চূড়োর সমস্ত জায়গাটাও অতি পবিত্র| মন্দির সম্বন্ধে বিধিগুলি এই: 13 “লম্বা মাপকাঠি ব্যবহার করে হাত বেদীর মাপ এইরকম| বেদীর গোড়ায চারদিকে যে গর্ত খোঁড়া রয়েছিল তার গভীরতা 1 হাত, প্রস্থেথ প্রতি ধারে 1 হাত| তার ধারের কানা বুড়ো আঙ্গুল থেকে কড়ে আঙ্গুলের যে দূরত্ব তার সমান| আর বেদীটি উচ্চতায় এই রকম- 14 মাটি থেকে তলার প্রান্ত পর্য়ন্ত গোড়ার মাপ 2 হাত, প্রস্থে 1 হাত এবং ছোট ধার থেকে বড় ধার মাপে 4 হাত, প্রস্থে 2 হাত| 15 বেদীতে পবিত্র আগুনের জায়গাটা উচ্চতায় 4 হাত| চার কোণ শিংযের আকারের| 16 বেদীতে আগুনের যে জায়গাটা তা মাপে দৈর্য়্ঘে 12 হাত এবং প্রস্থে 12 হাত, আকারে একেবারে বর্গক্ষেত্র| 17 গা থেকে বের হওয়া সরু তাকটিও আকারে বর্গক্ষেত্র, মাপে লম্বায় 14 হাত ও প্রস্থে 14 হাত| এর ধারটি প্রস্থে 1,2 হাত| (এর ভিত্তি যা একে ঘিরে রয়েছে তা হল প্রস্থে 2 হাত|) বেদী পর্য়ন্ত যে সিঁড়ি চলে গেছে তা পূর্ব দিকে|” 18 তখন সেই পুরুষটি আমায় বলল, “হে মনুষ্যসন্তান, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন: ‘বেদীর জন্য এই হল আইন, যে সময় তুমি বেদী নির্মাণ করবে সে সময় হোমবলি উত্সর্গ ও রক্ত ছিটানো এই অনুসারে কোর|” 19 তুমি সাদোক পরিবারের জন্য পাপার্থক বলি হিসাবে একটি যুব ষাঁড় দেবে| এই লোকরা লেবী পরিবারগোষ্ঠীর যাজক| এই লোকরা আমার কাছে উত্সর্গ এনে আমার সেবা করবে|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন| 20 “ষাঁড়ের কিছুটা রক্ত নিয়ে তা বেদীর চার কোণের চারটি সিং-এ লাগাবে এবং তার চারদিকের ধারেও লাগাবে| এইভাবে তুমি অবশ্য বেদী টিকে শুচি করবে এবং তাকে গ্রহণয়োগ্য করে তোল| 21 তারপর পাপার্থক বলির জন্য সেই ষাঁড় নিয়ে তা মন্দিরের বাইরের চত্বরের উপযুক্ত জায়গায় পোড়াবে| 22 দ্বিতীয় দিনে তুমি এক নির্দোষ পুং ছাগ উত্সর্গ করবে| তা হবে পাপার্থক বলি| যেভাবে যাজক ষাঁড় ব্যবহার করে বেদী শুচি করেছিল সেই ভাবেই তারা এটা দিয়ে বেদী শুচি করবে| 23 যখন বেদী শুচিকরণের কাজ শেষ হবে তখন তুমি নির্দোষ এক যুব ষাঁড় ও তার সাথে এক নির্দোষ পুং মেষ এনে তা উত্সর্গ করবে| 24 তারপর তুমি তা প্রভুর সামনে উত্সর্গ করবে| যাজকরা তার উপরে নুন ছিটাবে| তারপর যাজকরা সেই ষাঁড় ও পুং মেষকে হোমবলি হিসেবে প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করবে| 25 সাত দিনের প্রত্যেক দিনের পাপার্থক বলির জন্য তুমি ছাগ উত্সর্গ করবে| এছাড়াও তুমি একটি যুব ষাঁড় ও পালের পুং মেষ তৈরী করে রাখবে| এই সব পশুরা যেন নির্দোষ হয়| 26 সাতদিন ধরে যাজকরা বেদীটিকে শুচি করবে যাতে ঈশ্বরের উপাসনার জন্য তা প্রস্তুত হয়| 27 সাত দিনের পর অষ্টম দিনে যাজক অবশ্যই হোমবলি ও সহভাগীতার বলি বেদীতে উত্সর্গ করবে| তখন আমি তোমায় গ্রহণ করব|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন|
1 তারপর সেই পুরুষটি আমাকে মন্দিরের চত্বরের পূর্বদিকের দরজায ফিরিয়ে আনল| আমরা দরজায ছিলাম ও দরজা বন্ধ ছিল| 2 প্রভু আমায় বললেন, “এই দরজা বন্ধ থাকবে এবং এটা খোলা হবে না| কেউ এর মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করবে না কারণ প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর| এর মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করেছেন এবং সেই জন্যই তা বন্ধ রাখতে হবে| 3 কেবল শাসকরা প্রভুর সামনে ভোজ খাবার সময় তার দরজায বসতে পারে| সে অবশ্যই প্রবেশ পথের বারান্দা দিয়ে প্রবেশ করবে এবং সেই পথ দিয়েই বাইরে যাবে|” 4 তারপর সেই পুরুষ আমাকে উত্তর দিকের দরজা দিয়ে মন্দিরের সামনে আনল| আমি দেখলাম প্রভুর মহিমায মন্দির ভরে উঠেছে, আমি উপুড় হয়ে মাটিতে প্রণাম করলাম| 5 প্রভু আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, যত্ন সহকারে দেখ! তোমার চোখ ও কান ব্যবহার কর| এই বিষয়গুলি দেখ এবং প্রভুর মন্দিরের নিয়ম ও বিধি সম্বন্ধে আমি যা বলি তা মনোযোগ দিয়ে শোন| মন্দিরে কে প্রবেশ করতে পারবে এবং কে পারবে না সে সম্বন্ধে নিয়মগুলি সয়ন্ত মনোযোগ দিয়ে শোন| 6 তারপর ইস্রায়েলের সমস্ত অবাধ্য এবং আমার বিধি অবজ্ঞাকারী লোকদের এই বার্তা বল| তাদের বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: হে ইস্রায়েল পরিবার, তোমরা পূর্বে যে সমস্ত নোংরা জিনিষ করেছে সেগুলি তোমাদের বন্ধ করতে হবে! 7 তোমরা বিদেশীদের আমার মন্দিরে এনেছ আর সেই লোকরা প্রকৃতভাবে সুন্নত ছিল না- তারা নিজেদের সম্পূর্ণভাবে আমাকে দেয়নি| এই ভাবে তোমরা আমার মন্দির অপবিত্র করেছ| তোমরা চুক্তি ভেঙ্গে জঘন্য কাজ করেছ আর তারপর রুটি, চর্বি ও রক্তে নৈবেদ্য আমাকে দিয়েছ| 8 তোমরা আমার পবিত্র বিষয়গুলির পবিত্রতা রক্ষা করনি| না, তোমরা বিদেশীদের উপরে আমার পবিত্র স্থানের দায়িত্ব দিয়েছ| 9 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যে বিদেশী প্রকৃত অর্থে সুন্নত নয়, সে আমার মন্দিরে আসবে না- এমনকি ইস্রায়েলের মধ্যে স্থায়ীভাবে বাসকারী কোন বিদেশীও নয়| তাকে অবশ্যই সুন্নত হতে হবে এবং মন্দিরে আসার আগে সে যেন নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আমার হাতে দেয়| 10 অতীতে ইস্রায়েল আমাকে ছেড়ে বিপথে গেলে লেবীয়রাও আমাকে পরিত্যাগ করেছিল| ইস্রায়েল তাদের মূর্ত্তিদের অনুসরণ করার জন্য আমায় ত্যাগ করেছিল| লেবীয়রা তাদের সেই পাপের শাস্তি পাবে| 11 আমার পবিত্র স্থানের পরিচর্য়া করার জন্য লেবীয়দের মনোনীত করা হয়েছিল| তারা মন্দিরের প্রবেশের দরজাগুলি পাহারা দিত, মন্দিরে সেবা করত| তারা উত্সর্গের জন্যে পশুবলি দিত এবং প্রজাদের জন্য হোমবলি উত্সর্গ করত| প্রজাদের সাহায্য ও সেবা করার জন্য তাদের বেছে নেওয়া হয়েছিল| 12 কিন্তু ঐ লেবীয়রা প্রজাদের আমার বিরুদ্ধে পাপ করতে সাহায্য করেছিল| তারা লোকদের মূর্ত্তি পূজোয সাহায্য করেছিল! তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে এই প্রতিশ্রুতি করছি: ‘তাদের পাপের জন্য তারা শাস্তি ভোগ করবে|”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন| 13 “তাই আমার উদ্দেশ্যে যাজকীয কাজ করার জন্য লেবীয়রা আমার কাছে নৈবেদ্য নিয়ে আসবে না| তারা আমার পবিত্র কোন কিছুরই কাছে আসবে না| তারা তাদের জঘন্য কাজকর্মগুলির লজ্জা বহন করবে| 14 কিন্তু আমি তাদের আমার মন্দিরের যত্ন নিতে দেব| তারা মন্দিরের যেখানে যা করা কর্তব্য তাই করবে| 15 “যাজকরা সবাই লেবী পরিবারগোষ্ঠীর হলেও ইস্রায়েলের প্রজারা আমার থেকে তাদের মুখ ফিরিয়ে নিলে কেবল সাদোক পরিবারের যাজকরাই আমার পবিত্র স্থানের যত্ন নিত| তাই কেবল সাদোকের উত্তর পুরুষরাই আমার জন্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে| তারা মেদ ও রক্ত উত্সর্গ করতে আমার সামনে দাঁড়াবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন! 16 “তারা আমার পবিত্র স্থানে প্রবেশ করবে আর আমাকে সেবা করবার জন্য আমার টেবিলের কাছে আসবে| আমি তাদের হাতে যা দিয়েছি তারা তা রক্ষা করবে| 17 প্রাঙ্গণের দরজা দিয়ে ভেতরে ও মন্দিরে প্রবেশ করার সময় তারা যেন মসীনার কাপড় পরে এবং ভিতরের প্রাঙ্গণের দরজায ও মন্দিরে সেবা করার সময় তারা যেন পশমের তৈরী কোন কিছু না পরে| 18 তারা মাথায় মসীনার পাগড়ী বাঁধবে ও মসীনার জাঙ্গিযা পরবে এবং এমন কিছু পরবে না যাতে ঘাম হয়| 19 বাইরের প্রাঙ্গণে লোকদের কাছে যাবার সময় পরিচর্য়া করাকালীন যে কাপড় পরতে হয় তা ছেড়ে ফেলবে| ঐ কাপড়গুলি পবিত্র ঘরেই রেখে আসবে এবং অন্য কাপড় পরবে| এই ভাবে তারা লোকদের পবিত্র কাপড়গুলির স্পর্শ লাভ করতে দেবে না| 20 “এই যাজকরা তাদের মাথা কামিয়ে ফেলবে না অথবা চুলও লম্বা করবে না| তা করলে মনে হবে তারা দুঃখিত, প্রভুকে সেবা করার সুযোগ পেয়ে তারা আনন্দিত নয়| যাজকরা কেবল চুল কাটতে পারবে| 21 কোন যাজকই ভেতরের প্রাঙ্গণে আসার সময় দ্রাক্ষারস পান করবে না| 22 যাজকরা কখনই বিধ্বা বা ত্যাগপত্র দেওয়া হয়েছে এমন কোন মহিলাকে বিয়ে করবে না| তারা কেবল ইস্রায়েল পরিবারেরই কোন কুমারীকে বিয়ে করতে পারে অথবা এমন কোন বিধ্বাকে যার মৃত স্বামী যাজক ছিলেন| 23 “যাজকরা অবশ্যই আমার লোকদের পবিত্র ও সধারণ জিনিসের মধ্যে প্রভেদ কি তা শিক্ষা দেবে| কোনটি শুচি, কোনটি অশুচি তা জানতেও তারা অবশ্য লোকদের সাহায্য করবে| 24 যাজকরা বিচারসভায বিচারক হবে; প্রজাদের বিচার করার সময় আমার বিধি অনুসরণ করবে| তারা আমার সমস্ত পর্বে আমার বিধি নিয়মগুলি পালন করবে| তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে সম্মান করবে ও তা পবিত্রভাবে যাপন করবে| 25 তারা কোন মৃত ব্যক্তির কাছে গিয়ে নিজেদের অশুচি করবে না| কিন্তু মৃত ব্যক্তি যদি তাদের বাবা, মা, পুত্র, কন্যা, ভাই অথবা অব্বিাহিত বোন হয় তবে তারা অশুচি হতে পারে| 26 শুচি হলে পরে যাজকদের সাত দিন অপেক্ষা করতে হবে| 27 তারপর সে সেই পবিত্রস্থানে ফিরে যেতে পারে কিন্তু যেদিন সে পবিত্রস্থানের পরিচর্য়া করতে ভেতরের প্রাঙ্গণে যাবে, সেই দিন তাকে নিজের জন্য পাপার্থক বলি উত্সর্গ করতে হবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 28 “লেবীয়দের অধিকারে যে জমি আছে তার সম্বন্ধে: আমিই তাদের সম্পত্তি; তুমি ইস্রায়েলের লেবীয়দের কোন সম্পত্তি দেবে না| ইস্রায়েলে আমিই তাদের আধিকার| 29 তারা শস্য নৈবেদ্য, পাপার্থক নৈবেদ্য ও দোষার্থক নৈবেদ্য খাবার জন্য পাবে| ইস্রায়েলের লোকে প্রভুকে যা কিছুই দেয় তা তাদেরই হবে| 30 ফসল তোলার পর, সমস্ত রকম শষ্যের প্রথম অংশ যাজকদের হয়| তোমরা ও তোমাদের প্রথম শষ্যের ভাগ যাজকদের দেবে| একাজ তোমাদের গৃহে আশীর্বাদ আনবে| 31 স্বাভাবিক ভাবে মারা গেছে বা বন্য পশুতে কামড়ে ছিঁড়েছে এমন কোন পাখি বা পশুর মাংস যাজকরা অবশ্য খাবে না|
1 “ইস্রায়েল পরিবারের জন্য তোমার জমি বণ্ট্ন করা উচিত্|সেই সময়, জমির একটি অংশ পৃথক করে রাখবে যা প্রভুর জন্য পবিত্র হবে| সেই জমির মাপ দৈর্য়্ঘে 25,000 হাত ও প্রস্থেথ 20,000 হাত হবে: জমির সবটাই হবে পবিত্র| 2 দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থে 500 হাত করে একটি চারকোণা জায়গা মন্দিরের জন্য ব্যবহার করা হবে| মন্দিরের চারধারে 50 হাত চওড়া একটি খোলা জায়গা থাকবে| 3 সেই পবিত্র জায়গার মধ্যে তুমি একটি 25,000 হাত দীর্ঘ ও 10,000 হাত প্রস্থের জমি মাপবে- মন্দিরটা এই জায়গাতেই হবে| মন্দিরের এই জায়গাটি হবে পবিত্রতম স্থান| 4 পবিত্র স্থানের এই অংশটি যাজক ও মন্দিরের ভৃত্যদের জন্য; যারা প্রভুর সেবা করার জন্য এগিয়ে আসে| সেটা যাজকদের ঘরের জন্য ও মন্দিরের জন্য| 5 আরেকটি স্থান যা মাপে 25,000 হাত দীর্ঘ ও 10,000 হাত চওড়া তা হবে লেবীয়দের জন্য, যারা মন্দিরে সেবা করে| সেই জমি লেবীয়দের অধিকারে থাকবে এবং বাস করবার জন্য তাদের শহর হবে| 6 “সেই শহরকে তুমি 25,000 হাত লম্বা ও 5,000 হাত চওড়া একটি ক্ষেত্র দেবে| এটা হবে সমস্ত ইস্রায়েল পরিবারের জন্য| 7 পবিত্র স্থানের উভয় পার্শ্বে এবং শহরটির জমির একটি ভাগে শাসকের অংশ থাকবে| সেই স্থানটি হবে পবিত্রস্থানের পাশে ও পূর্ব ও পশ্চিম শহরের সীমানা| ইস্রায়েলের কোন পরিবারগোষ্ঠীর অধিকারের জমি যত চওড়া, এ জমিও ঠিক ততটাই চওড়া হবে| তা পশ্চিম সীমা থেকে পূর্ব সীমা পর্য়ন্ত বিস্তৃত হবে| 8 এই জমি হবে ইস্রায়েলের শাসকদের সম্পত্তি| সেই জন্য শাসকদের আমার প্রজাদের জীবন কষ্টকর করে তোলার প্রয়োজন হবে না| কিন্তু তারা সেই জমি ইস্রায়েলকে তাদের পরিবারগোষ্ঠীর জন্য দেবে|” 9 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন, “ইস্রায়েলের শাসকরা, যথেষ্ট হয়েছে আর আমার লোক জনের প্রতি হিংস্র হোযো না! ইস্রায়েলকে তাদের পরিবার গোষ্ঠীগুলির জমি দাও|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 10 “লোক ঠকানো বন্ধ কর| সঠিক পাল্লা ও মাপ ব্যবহার কর| 11 ঐফার (শুকনো জিনিস মাপার জন্য পাত্র) ও বাত (তরল জিনিস মাপার পাত্র) এর মাপ যেন এক হয়| বাত ও ঐফা যেন উভয়েই যেন 1/10 হোমার হয়| ঐ মাপগুলি যেন হোসরের মাপ অনুসারেই হয়| 12 এক শেকল 20 গেরার সমান| এক মিনা 60 শেকলের সমান, তা অবশ্যই 20 শেকল যোগ 25 শেকল যোগ 15 শেকলের সমান হয়| 13 “এই বিশেষ নৈবেদ্যগুলি তোমরা অবশ্যই দেবে:প্রত্যেক হোসর গম থেকে 1/6 ঐফা গম দাও| প্রত্যেক হোসর বার্লি থেকে 1/6 ঐফা বার্লি দাও| 14 প্রতি কোর ওলিভ তেলের জন্য 1/10 বাত পরিমাণ ওলিভ তেল| মনে রেখো: দশ বাতে এং হোসর হয়| দশ বাতে এং কোর হয়| 15 ইস্রায়েলের চারণ ভূমিতে চরে এমন প্রতিটি 200 মেষ থেকে একটি করে মেষ|“এই বিশেষ নৈবেদ্যগুলি শস্য নৈবেদ্য, হোমবলির নৈবেদ্য ও সহভাগীতার নৈবেদ্যর জন্য| এইসব নৈবেদ্য লোকদের শুচি করবার জন্য|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন| 16 “নগরের প্রত্যেকে এই উপহার দেবার জন্য ইস্রায়েলের শাসকের সঙ্গে যোগ দেবে| 17 কিন্তু বিশেষ পবিত্র দিনের জন্য যা প্রযোজন তা অবশ্যই শাসক দেবে| শাসক অবশ্যই উত্সবের দিনগুলির জন্য, অমাবস্যা ও নিস্তারপর্বের জন্য, এবং ইস্রায়েলের পরিবারের সমস্ত বিশেষ উত্সবের জন্য হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং পেয নৈবেদ্যর য়োগান দেবে| ইস্রায়েল পরিবারকে পবিত্র করার জন্য যে পাপার্থক নৈবেদ্য, শস্য নৈবেদ্য, হোমবলি ও সহভাগীতার নৈবেদ্যর প্রয়োজন তা অবশ্যই য়োগাবে|” 18 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “প্রথম মাসের প্রথম দিনে তুমি এংটি নিখুঁত ষাঁড় নেবে; মন্দির পবিত্র করতে তা ব্যবহার কর|” 19 যাজক পাপার্থক বলি থেকে কিছুটা রক্ত নিয়ে তা মন্দিরের চৌকাঠে, বেদীর চার কোণে এবং ভেতরের প্লাঙ্গনের দরজার চৌকাঠে লাগাবে| 20 সেই মাসের সপ্তম দিনেও তুমি অজ্ঞাতে যে ব্যক্তি পাপ করেছে ও যে অবোধ তার জন্য ঐ একই কাজ করবে| এই ভাবে তুমি সেই মন্দির শুচি করবে| 21 “প্রথম মাসের 14তম দিনে তুমি নিস্তারপর্ব পালন করবে| খামিরবিহীন রুটির ভোজের পর্বও সেই সময় শুরু হয় আর সাত দিন ধরে চলে| 22 সেই সময় শাসক নিজের জন্য ও ইস্রায়েলের লোকদের জন্য পাপমোচন নৈবেদ্য হিসাবে এংটি ষাঁড় উত্সর্গ করবে| 23 উত্সবের সাত দিনের প্রত্যেকদিন শাসক নিখুঁত সাতটি ষাঁড় ও একটি পুং মেষ সরবরাহ করবে| সেই গুলি প্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি রূপে উত্সর্গ করা হবে| এছাড়াও, প্রত্যেকদিন তাকে একটি করে পুং ছাগও অবশ্যই উত্সর্গ করবার জন্য দিতে হবে| 24 শাসক প্রত্যেক ষাঁড়ের সাথে শস্য নৈবেদ্য হিসাবে এক ঐফা বার্লি এবং প্রতি মেষের সাথে এক ঐফা পরিমাণ বার্লি দেবে| শাসক প্রত্যেক ঐফার শস্যের সাথে এক হিন পরিমাণ তেলও দেবে| 25 নিস্তারপর্বের সাত দিনই শাসক ঐ একই কাজ করবে| সপ্তম মাসের 15তম দিনে ঐ উত্সব শুরু হয়| এই নৈবেদ্যগুলি হবে পাপার্থক নৈবেদ্য, হোমবলির নৈবেদ্য, শস্য নৈবেদ্য ও তেল উত্সর্গ|”
1 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “ভিতরের প্রাঙ্গণের পূর্বের দিকের দরজা সপ্তাহে কাজ করার ছয় দিন বন্ধ থাকবে কিন্তু নিস্তারপর্বের দিন ও অমাবস্যায তা খুলে দেওয়া হবে| 2 শাসক সেই দরজার অলিন্দ দিয়ে গিয়ে চৌকাঠে দাঁড়াবে| যাজক তখন শাসকের সেই হোমবলি ও সহভাগীতার নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে| শাসক কিন্তু দরজার মুখে উপাসনা করবে এবং তারপর বাইরে যাবে| সূর্য়্য়াস্ত পর্য়ন্ত সেই দরজা বন্ধ করা হবে না| 3 সাধারণ লোকরাও নিস্তারপর্বের দিনে ও অমাবস্যার দিনে সেই দরজায দাঁড়িয়ে প্রভুর উপাসনা করবে| 4 “শাসক নিস্তারপর্বের দিন প্রভুকে উত্সর্গ করার জন্য অবশ্যই ছটি নির্দোষ মেষশাবক ও নিখুঁত পুং মেষের য়োগান দেবে| 5 নৈবেদ্য হিসাবে মেষের সাথে তাকে এক ঐফা শস্য দিতে হবে তবে মেষশাবকের সাথে দেওয়া শস্য নৈবেদ্যর পরিমাণ শাসকের ইচ্ছানুসারেই হবে| কিন্তু প্রতি ঐফা শস্যের সাথে তিনি অবশ্যই এক হিন পরিমাণ তেল দেবেন| 6 “অমাবস্যার দিন তাকে এক নির্দোষ যুব ষাঁড়, ছটি মেষশাবক ও একটি পুং মেষ উত্সর্গ করতে হবে| 7 শাসক প্রতি ষাঁড়ের সাথে ও প্রতি পুং মেষের সঙ্গে এক এক ঐফা শস্য আনবে| মেষশাবকের সাথে যে শস্য নৈবেদ্য দিতে হবে তার পরিমাণ শাসকের ইচ্ছানুযাযী হতে পারে কিন্তু প্রতি ঐফা শস্যের সঙ্গে তাকে অবশ্যই এক হিন পরিমাণ তেল দিতে হবে| 8 “ঢোকার সময় শাসক অবশ্যই পূর্ব দিকের দরজার বারান্দায প্রবেশ করবে এবং সেই দিক দিয়েই বেরিয়ে আসবে| 9 “বিশেষ পর্বের সময় সাধারণ মানুষ যখন প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে আসে, তখন যে ব্যক্তি উপাসনা করার জন্য উত্তরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সে দক্ষিণের দরজা দিয়ে বাইরে যাবে আর যে ব্যক্তি দক্ষিণের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সে উত্তরের দরজা দিয়ে বাইরে যাবে| যে পথে প্রবেশ করা হয়েছে সেই পথ দিয়ে কেউ যেন বাইরে না যায়| প্রত্যেক ব্যক্তি যেন সোজা পথ চলে বাইরে বার হয়| 10 শাসক লোকদের মধ্যে থাকবে| লোকেরা ভেতরে প্রবেশ করলে শাসকও প্রবেশ করবে এবং তারা বার হলে সেও বার হবে| 11 “পর্বের সময় এবং বিশেষ বিশেষ সমাবেশের সময় প্রতিটি বৃষ-বতসের সঙ্গে এক ঐফা শস্য নৈবেদ্য এবং প্রতি পুং মেষের সঙ্গেও এক ঐফা করে শস্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে হবে| মেষশাবকের সাথে শস্য নৈবেদ্যর পরিমাণ যে ব্যক্তি ঐটি উত্সর্গ করছে তার ইচ্ছানুযাযী হতে পারে কিন্তু তাকে প্রতি ঐফা শস্যের সঙ্গে অবশ্যই যেন এক হিন পরিমাণ তেল দিতে হবে| 12 “শাসক যখন প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজের ইচ্ছানুসারে উপহার আনে তখন তা হোমবলি, সহভাগীতার বলি বা মনের ইচ্ছানুযাযী উত্সর্গ হতে পারে- এর জন্য পূর্ব দিকের দরজা খোলা থাকবে| শাসক নিস্তারপর্বের মত তার হোমবলি ও সহভাগীতার বলি উত্সর্গ করবে এবং সে চলে গেলে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে| 13 “প্রতিদিন তুমি একটি নির্দোষ এক বত্সর বযস্ক মেষশাবকের য়োগান দেবে| তা প্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি রূপে উত্সর্গ করা হবে| প্রতি সকালে তার য়োগান দেবে| 14 তাছাড়া প্রতি দিন সকাল বেলা মেষশাবকের সঙ্গে শস্য নৈবেদ্যও উত্সর্গ করবে| গম ভেজাবার জন্য প্রতি 1/6 ঐফা গমের সঙ্গে 1/3 হিন পরিমান তেলও তোমাকে দিতে হবে| এ হবে প্রভুর উদ্দেশ্যে প্রতি দিনের জন্য উত্সর্গীকৃত শস্য নৈবেদ্য| 15 তারা চিরকাল প্রতি সকাল বেলা মেষশাবক, শস্য নৈবেদ্য, ও তেল হোমবলি উত্সর্গ করার জন্য দেবে|” 16 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যদি শাসক তার জমির কোন অংশ তার পুত্রকে দেয়, তবে সেই অংশ পুত্রদের সম্পত্তি হবে|” 17 কিন্তু শাসক যদি সেই জমির অংশ উপহার হিসাবে তার কোন এক দাসকে দেয় তবে তা কেবল মুক্তির বছরপর্য়ন্ত সেই দাসের অধিকারে থাকবে তারপর তা শাসকের কাছে ফেরত যাবে| কেবল শাসকের পুত্ররাই উপহারের স্থায়ী অধিকারী হতে পারে| 18 শাসক লোকদের কোন জমি নেবে না বা তাদের জোরপূর্বক জমি ছেড়ে যেতে বাধ্য করবে না| শাসক কেবল মাত্র তার নিজের জমির কিছু অংশ তার পুত্রদের দেবে এবং এই ভাবে আমার লোকরা তাদের জমি ছাড়তে বাধ্য হবে না|” 19 সেই পুরুষ আমায় দরজার পাশের প্রবেশ পথে চালিত করে উত্তর দিকে যাজকদের জন্য যে পবিত্র ঘরগুলি আছে সেইখানে নিয়ে গেলেন| সেখানে পশ্চিম প্রান্তের সরু রাস্তাটিতে আমি একটা স্থান দেখলাম| 20 সেই পুরুষটি আমায় বলল, “এইস্থানে যাজকদের দোষমোচনের বলি ও পাপমোচনের বলি অবশ্য সেদ্ধ করতে হবে| তারা শস্য নৈবেদ্য পোড়াবে, তাই তাদের এইসব নৈবেদ্য প্রাঙ্গণে নিয়ে আসার দরকার হবে না| তারা এইসব পবিত্র জিনিষ বাইরে আনবে না যেখানে লোকেরা থাকে|” 21 তখন সেই পুরুষটি আমাকে বাইরের প্রাঙ্গণে এনে প্রাঙ্গণের চারধারে চালিত করল| আমি বড় প্রাঙ্গণটির চার কোণে ছোট ছোট প্রাঙ্গণ দেখতে পেলাম| 22 প্রতি প্রাঙ্গণের কোণে একটি করে ছোট ঘেরা জায়গা ছিল| প্রতিটি ছোট প্রাঙ্গণ লম্বায় 40 হাত ও চওড়ায় 30 হাত করে ছিল| চারটি স্থানেরই মাপ এক| 23 প্রতিটি ছোট চার বারান্দার চারধার ইঁটের দেওয়ালে ঘেরা ছিল| ইঁটের দেওয়ালে স্থানে স্থানে রান্নার জায়গা ছিল| 24 সেই পুরুষটি আমায় বলল, “এই রান্না ঘরগুলিতেই, মন্দিরের সেবকরা লোকরা যে সব উত্সর্গগুলি আনবে সেগুলি সেদ্ধ করবে|”
1 সেই পুরুষটি আমায় আবার মন্দিরের প্রবেশস্থানে নিয়ে এল| আমি মন্দিরের পূর্বের দরজার নীচে দিয়ে জল বয়ে আসতে দেখলাম| (মন্দিরের সম্মুখভাগ পূর্ব দিকে মুখ করা|) জলের ধারা মন্দিরের দক্ষিণ দিক থেকে বয়ে বেদীর দক্ষিণ দিক পর্য়ন্ত যাচ্ছিল| 2 সেই পুরুষটি আমায় উত্তর দিকের দরজা দিয়ে নিয়ে গিয়ে পূর্ব দিকের বাইরের দরজার বাইরে চারধার দেখালেন| জল দরজার দক্ষিণ দিক থেকে বইছিল| 3 সেই পুরুষটি একটি মাপার ফিতে নিয়ে পূর্ব দিকে হাঁটল| তারপর 1000 হাত দূরত্ব মেপে আমাকে জলের মধ্যে দিয়ে সেই স্থানে হেঁটে যেতে বলল| সেখানকার জলের গভীরতা গোড়ালি পর্য়ন্ত ছিল| 4 সেই পুরুষটি আরও 1000 হাত মেপে আমাকে সেই স্থানে জলের মধ্যে হেঁটে যেতে বলল; সেখানে জল আমার হাঁটু পর্য়ন্ত উঠল| তারপর সে আরও 1000 হাত মেপে সেই স্থানে আমাকে জলের মধ্যে হেঁটে যেতে বলল| সেখানে জল আমার কোমর পর্য়ন্ত উঠল| 5 তারপর সেই পুরুষটি আরও 1000 হাত মাপল, কিন্তু সেখানকার জল পার হয়ে যাবার পক্ষে খুব গভীর ছিল| জল সেখানে নদীর মত বয়ে যাচ্ছিল, সাঁতরে যাবার পক্ষে যথেষ্ট গভীর, কিন্তু পার হয়ে যাবার পক্ষে খুব বেশী গভীর| 6 তখন সেই পুরুষটি আমায় বলল, “হে মনুষ্যসন্তান, তুমি যা দেখলে তা কি মনোযোগ সহকারে দেখেছ?”তারপর সেই পুরুষটি আমায় নদীর ধারে নিয়ে গেল| 7 আমি সেই নদীর ধার দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে সেই জলের দুধারে অনেক গাছ দেখতে পেলাম| 8 সেই পুরুষটি আমায় বলল, “এই জলে পূর্ব দিকে অরাবা তলভূমি পর্য়ন্ত বয়ে যাচ্ছে| 9 এই জল মৃতসাগরে বয়ে যাচ্ছে এবং সেটি সেই সমুদ্রের জলকে পরিষ্কার ও সতেজ করে তুলবে| এই জলে অনেক মাছ থাকবে এবং নদীটি যে সমস্ত জায়গা দিয়ে বয়ে গেছে সেখানে সব রকমের জীবজন্তু বাস করে| 10 তুমি ঐন্-গদী থেকে ঐন্-ইগ্লযিম পর্য়ন্ত নদীর দুধারে জেলেদের দেখতে পাবে| তুমি তাদের জাল ফেলে বিভিন্ন রকমের মাছ ধরতেও দেখবে| ভূমধ্যসাগরের মতোই মৃত সাগরেও বহু প্রকারের মাছ থাকবে| 11 কিন্তু পাঁকের জায়গা ও ছোট ছোট জলাভূমিগুলি পরিষ্কার হবে না, তা নোনতা হয়ে ওঠার জন্য ছেড়ে দেওয়া আছে| 12 নদীর দুধারে সব রকমের ফলের গাছ জন্মাবে| তাদের পাতা কখনও খসে পড়বে না| ঐ গাছগুলি ফল দেওয়াও বন্ধ করবে না| গাছগুলিতে প্রতি মাসেই ফল ধরবে কারণ গাছগুলির জন্য যে জল প্রয়োজন তা মন্দির থেকে আসে| গাছগুলির ফল খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হবে এবং তাদের পাতাগুলো রোগ আরোগ্য করবার জন্য ব্যবহৃত হবে|” 13 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তুমি ইস্রায়েলের বারো পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে এই সীমা অনুসারে জমি ভাগ করবে| যোষেফের জন্য দুই অংশ থাকবে|” 14 তুমি জমি সমান ভাগে ভাগ করবে| আমি এই জমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেব বলে প্রতিশ্রতি দিয়েছিলাম বলেই তা তোমাদের দিচ্ছি| 15 “জমির সীমানা এইরকম: উত্তর দিকে তা হিত্লোনের পথে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত যাবে যেখানে রাস্তা ঘুরে গেছে হমাত্, সদাদ, 16 বরোথা, সিব্রযিম (যা দম্মেশক ও হম্মাতের সীমার মধ্যে অবস্থিত) এবং হত্সর-হত্তীকোন, যেটা হৌরণের সীমানায অবস্থিত| 17 সুতরাং সেই সীমানা সমুদ্র থেকে দম্মেশকের সীমানার উত্তরদিকে অবস্থিত হত্সোর ঐনন পর্য়ন্ত যাবে| আর হমাতের সীমা হচ্ছে ঐ উত্তর প্রান্ত| 18 “পূর্ব দিকের সেই সীমা হত্সোর ঐনন অর্থাত্ হৌরণ ও দম্মেশকের মধ্য থেকে গিলিয়দ ও ইস্রায়েল দেশের মধ্যে য়র্দন নদীর ধার বরাবর পূর্ব সমুদ্রের দিকে একদম তামর পর্য়ন্ত| এ হবে পূর্ব সীমা| 19 দক্ষিণ দিকে, সীমা হবে তামর থেকে মরীবা কাদেশের হ্রদ পর্য়ন্ত| তারপর তা মিশরের নদী থেকে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত যাবে| এটা হবে দক্ষিণ দিকের সীমা| 20 “আর পশ্চিম পাড়ে ভূমধ্যসাগর একেবারে লীবো হমাতের সামনে পর্য়ন্ত সীমাস্বরূপ| এটা হবে পশ্চিমের সীমানা| 21 “এইভাবে তোমরা ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর জন্য তোমাদের মধ্যে জমি ভাগ করে দেবে| 22 তোমাদের সম্পত্তি হিসাবে এটা তোমরা তোমাদের মধ্যে এবং তোমাদের মধ্যে যে বিদেশীরা বাস করে যাদের সন্তান-সন্ততি আছে তাদের মধ্যে বণ্ট্ন করে দেবে| এই বিদেশীরা সেখানকার বাসিন্দা তাদের ইস্রায়েলীয় বলে গন্য হবে| ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে তাদের তুমি কিছু জমি ভাগ করে দেবে| 23 সেই বাসিন্দারা যেখানে বাস করে, সেখানকার পরিবারগোষ্ঠী তাদের কিছু জমি দেবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন|
1 “উত্তর দিকের সীমা পূর্বদিকে ভূমধ্যসাগর হতে হিত্লোন ও হমাতের পথে এবং শেষে হত্সর ঐনন পর্য়ন্ত গেছে| এটা দম্মেশক ও হমাতের মধ্যবর্তী সীমাতে| এই দলের পরিবারগোষ্ঠীর জমি এই সীমার পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্য়ন্ত যাবে| উত্তর থেকে দক্ষিণে এখানকার পরিবারগোষ্ঠীরা হল: দান, আশের, নপ্তালি, মনঃশি, ইফ্রযিম, রূবেণ ও যিহূদা| 2 3 4 5 6 7 8 “জমির পরবর্তী অংশ বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার জন্য রয়েছে| এই জমি যিহূদার দক্ষিণে অবস্থিত| এর ক্ষেত্র উত্তর থেকে দক্ষিণে লম্বায় 25,000 হাত এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে এর চওড়া ততটাই যতটা জমি অন্য পরিবারগোষ্ঠীর অধিকারে| এই জমির মধ্যভাগে মন্দিরটি রয়েছে| 9 তোমরা এই জমি প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করবে| এর মাপ লম্বায় 25,000 হাত এবং চওড়ায় 20,000 হাত| 10 জমির এই বিশেষ অংশ যাজক গন ও লেবীয়দের মধ্যে বণ্ট্ন করে দেওয়া হবে|“যাজকরা এই জমির এক অংশ পাবে| সেই জমি উত্তরে লম্বায় হবে 25,000 হাত, চওড়ায় পশ্চিমে 10,000 হাত, পূর্বদিকে চওড়ায় 10,000 হাত এবং দক্ষিণে লম্বায় 25,000 হাত| এই জমির মধ্যেই প্রভুর মন্দিরটি হবে| 11 এই জমি সাদোকের উত্তরপুরুষদের জন্য| এই লোকরা আমার পবিত্র যাজক হিসাবে মনোনীত কারণ তারা যেসময় ইস্রায়েলীয়রা আমায় পরিত্যাগ করে, সে সময়েও তারা আমায় সেবায রত ছিল| লেবী পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের মত সাদোকের পরিবার আমায় পরিত্যাগ করে যায়নি| 12 জমির পবিত্র অংশের এই ভাগ বিশেষভাবে এই যাজকদের জন্য| এ জমির অবস্থান লেবীদের জমির পাশেই| 13 “যাজকদের পরেই লেবীদের জন্য জমির যে ভাগ থাকবে তা লম্বায় 25,000 হাত এবং চওড়ায় 10,000 হাত| তারা মাপে সবটাই পাবে- অর্থাত্ দৈর্য়্ঘে 25,000 হাত ও প্রস্থে 20,000 হাত| 14 লেবীয়রা এই জমির কোন অংশ বিক্রি বা তা নিয়ে ব্যবসা করবে না| এই জমি তারা বিক্রি করতে পারবে না এবং দেশের এই অংশকে টুকরো করতে পারবে না| কারণ এই জমি প্রভুর- এটার বিশেষ মূল্য রয়েছে, তা দেশের উত্তর অংশে অবস্থিত| 15 “যাজক ও লেবীয়দের দেবার পর 25,000 হাত দৈর্য়্ঘের ও 5,000 হাত প্রস্থেথর মাপের জমি অবশিষ্ট থাকবে| এই জমি শহরের জন্য বা পশুদের তৃণভূমি বা ঘরবাড়ি বানানোর জন্য থাকবে| সাধারণ লোকে এই জমি ব্যবহার করতে পারে| শহরটা এর মাঝখানে হবে| 16 শহরের মাপগুলি এই: উত্তরদিকে তা হবে 4,500 হাত, দক্ষিণে 4,500 হাত, পূর্বে 4,500 হাত এবং পশ্চিমে 4,500 হাত| 17 শহরে তৃণভূমি থাকবে আর তা হবেউত্তরে ও দক্ষিণে 250 হাত, পূর্ব ও পশ্চিমে 250 হাত| 18 পবিত্র স্থানের ধারে পূর্বে ও পশ্চিমে 10,000 হাত করে যে জায়গা পড়ে থাকবে তা শহরের কর্মীদের জন্য খাদ্যের য়োগান দেবে| 19 শহরের কর্মীরা এই জমি চাষ করবে| কর্মীরা ইস্রায়েলের যে কোন পরিবারগোষ্ঠীরই হতে পারে| 20 “জমির এই বিশেষ অংশ হবে একটি বর্গক্ষেত্র যেটি লম্বায় ও চওড়ায় 25,000 হাত হবে| পবিত্র অংশটি এবং শহরের অন্য অংশটি এই জমির অন্তর্ভূক্ত হবে| 21 “সেই বিশেষ জমির কিছু অংশ শহরের শাসকের জন্য থাকবে| জমির বিশেষ অংশটি বর্গক্ষেত্র লম্বায় ও চওড়ায় 25,000 হাত| জমির কিছু অংশ যাজকদের, কিছুটা লেবীয়দের এবং কিছুটা মন্দিরের জন্য| এই জমির মধ্যে মন্দির থাকবে| জমির বাকিটা দেশের শাসকের| বিন্যামীন ও যিহূদার জমির মধ্যে যে জায়গা তা শাসক পাবে| 22 23 “এই পূর্ব্বোল্লিখ জাতিগুলি মতই অবশিষ্ট জাতিরা সেই একই পূর্ব ও পশ্চিমের সীমা পাবে| উত্তর থেকে দক্ষিণে এই পরিবারগোষ্ঠীগুলি হল: বিন্যামীন, শিমিয়োন, ইষাখর, সবূলূন ও গাদ| 24 25 26 27 28 “গাদের জমির দক্ষিণ সীমা তামোর থেকে মরীবা কাদেশের জলাশয় এবং তারপর মিশরের স্রোত থেকে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত যাবে| 29 এবং এই জমিই তুমি ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দেবে| সেটাই প্রত্যেক দল পাবে|” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন| 30 “শহরের এই ফটকগুলির নাম ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর নামানুসারে রাখা হবে| শহরের ফটকগুলি হবে এখানে বর্নিত ফটকগুলির মতই|“শহর উত্তর দিকে লম্বায় হবে 4,500 হাত 31 ফটকের সংখ্যা হবে তিনটি: রূবেণের ফটক, যিহূদার ফটক ও লেবীর ফটক| 32 “শহরের পূর্ব দিক লম্বায় হবে 4,500 হাত| সেখানকার তিনটি দ্বারের নাম হবে যোষেফের দ্বার, বিন্যামীনের দ্বার এবং দানের দ্বার| 33 শহরের দক্ষিণ দিক লম্বায় হবে 4,500 হাত এবং তার তিনটি দরজার নাম হবে: শিমিয়োনের দ্বার, ইষাখরের দ্বার এবং সবূলূনের দ্বার| 34 “শহরের পশ্চিম দিক লম্বায় হবে 4,500 হাত|সেখানেও তিনটি দ্বার থাকবে| তাদের নাম হবে: গাদের দ্বার, আশেরের দ্বার ও নপ্তালির দ্বার| 35 “শহরের চারধারে দূরত্ব হবে 18,000 হাত আর এখন থেকে শহরের নাম হবে: ‘প্রভু তত্র’|”
1 যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমের রাজত্বের তৃতীয় বছরে বাবিলের রাজা নবূখদ্নিত্সর জেরুশালেমে এসেছিলেন এবং তাঁর সৈন্যসমূহ দিয়ে শহরটি ঘিরে ফেলেছিলেন| 2 প্রভু নবূখদ্নিত্সরকে যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমকে পরাস্ত করতে দিয়েছিলেন| নবূখদ্নিত্সর মন্দির থেকে কয়েকটি বাসন-কোষন ও অন্যান্য জিনিস বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন| তিনি সেইগুলি তাঁর আরাধ্য দেবতার মন্দিরে রাখলেন| 3 তারপর রাজা নবূখদ্নিত্সর তাঁর নপুংসকদের প্রধান অস্পনসকে ইস্রায়েলের রাজবংশীয় কয়েকজনকে এবং ইস্রায়েলের গুরুত্বপূর্ণ পরিবারসমূহের কয়েক জনকে আনতে আদেশ জারি করলেন| 4 তিনি এমন কয়েক জন যুবককে চেয়েছিলেন, যারা নিষ্কলঙ্ক সুপুরুষ, বুদ্ধিমান, শিক্ষিত, উপলব্ধি করতে সক্ষম এবং যারা তাঁর কাজ করতে পারবে| রাজা অস্পনসকে বললেন ওই যুবকদের কল্দীয় লোকদের ভাষা ও রচনা শিখিয়ে দিতে| 5 রাজার বিশেষ সুখাদ্য থেকে নবূখদ্নিত্সর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য ও পানীয় ঐ যুবকদের দিয়েছিলেন| তিন বছরের শিক্ষানবিশীর শেষে তারা যাতে রাজাকে সেবা করতে পারে তিনি সেই ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন| 6 যিহূদার পরিবারবর্গের এই যুবকদের মধ্যে ছিলেন দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়| 7 অস্পনস এদের প্রত্যেকের বাবিলের ভাষায় নামকরণ করলেন| দানিয়েল হল বেলটশত্সর, হনানিয় হল শদ্রক, মীশাযেল হল মৈশক ও অসরিয় হল অবেদ্-নগো| 8 কিন্তু দানিয়েল স্থির করলেন য়ে রাজার শৌখীন খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে নিজেকে অশুচি করবেন না এবং এ ব্যাপারে তিনি অস্পনসের অনুমতি চাইলেন| 9 ঈশ্বর দানিয়েলকে অস্পনসের কৃপা ও করুণার পাত্র করলেন| 10 কিন্তু অস্পনস বললেন, “আমি আমার মনিব, রাজাকে ভয় করি| রাজার আদেশ অনুসারে আমি যদি তোমাকে খাদ্য ও পানীয় না দিই তাহলে তোমাকে হয়ত অন্যান্য যুবকদের তুলনায় দুর্বল দেখাবে| এতে তিনি আমার ওপর রুদ্ধ হতে পারেন এবং আমার মাথা কেটে ফেলতে পারেন| এবং এটা হবে তোমার এবং তোমার বন্ধুদের দোষে|” 11 এরপর দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়ের ওপর লক্ষ্য রাখার জন্য অস্পনস রক্ষী নিয়োগ করলেন| 12 দানিয়েল রক্ষীকে বললেন, “দয়া করে আমাদের শুধু শস্য ও জল দাও| 13 দশ দিন পর য়ে সব যুবকরা রাজকীয় খাবার খাচ্ছে তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনা করো| দেখ কাদের বেশী স্বাস্থ্যবান দেখায় এবং তারপর য়েমন দেখবে তেমন ভাবে তোমার এই ভৃত্যদের সঙ্গে ব্যবহার করবে|” 14 তাই দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়র ওপর রক্ষী দশ দিন ধরে এটি পরীক্ষা করতে রাজী হল| 15 দশ দিন পর, য়ে সমস্ত যুবক রাজার বিশেষ সুখাদ্য খাচ্ছিল তাদের থেকে দানিয়েল ও তাঁর বন্ধুদের বেশী স্বাস্থ্যবান দেখাচ্ছিল| 16 তাই রক্ষী দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়কে রাজার দেওয়া খাবার না দিয়ে শস্য খাদ্য দিতে লাগলে| 17 ঈশ্বর দানিয়েল ও তাঁর তিন বন্ধুদের জ্ঞান এবং সমস্ত রকমের সাহিত্য ও শিক্ষিত লোকেদের লেখা বোঝবার মত ক্ষমতা দিলেন| দানিয়েল সমস্ত রকমের স্বপ্ন ও দর্শন বুঝতে সমর্থ হয়েছিলো| 18 তিন বছর শিক্ষানবিশীর শেষে অস্পনস সমস্ত যুবককে নবূখদ্নিত্সরের সামনে উপস্থিত করলেন| 19 রাজা তাদের সবার সাথে কথা বলার পর দেখলেন য়ে সমস্ত যুবকদের মধ্যে দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয় সবচেয়ে ভাল| তাই এই চার জন যুবককে রাজার বিশেষ ভৃত্য করা হল| 20 যখনই রাজার বুদ্ধিমান উপদেশের প্রয়োজন হত, তখনই উনি দেখতেন তারা তাঁর রাজ্যের যাদুকরগণ এবং বিচক্ষণ ব্যক্তি সমূহের চেয়ে দশগুন ভাল| 21 তাই দানিয়েল কোরস রাজার রাজত্বের প্রথম বছর পর্য়ন্ত রাজভৃত্য হয়ে রইলেন|
1 নবূখদ্নিত্সরের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে তিনি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে উদ্বিগ্ন হলেন য়ে তাঁর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটল| 2 সুতরাং রাজা তাঁর স্বপ্ন বুঝিয়ে বলবার জন্য মন্ত্রবেত্তা, মায়াবিদ্যা, যাদুকর এবং কল্দীয়দের আদেশ দিলেন| তাই তারা রাজার সামনে এসেছিল| 3 তারপর রাজা তাদের বললেন, “আমি একটি স্বপ্ন দেখে উদ্বিগ্ন হয়েছি| আমি স্বপ্নটির সম্বন্ধে সব কিছু জানতে চাই|” 4 তখন কল্দীয়রা অরামীয় ভাষায় রাজাকে বলল, “মহারাজ দীর্ঘজীবি হন! আমরা আপনার অনুগত| আপনি অনুগ্রহ করে আপনার স্বপ্নের কথা বলুন যাতে আমরা তার ব্যাখ্যা করতে পারি|” 5 রাজা নবূখদ্নিত্সর তাদের বললেন, “না, এই আমার সিদ্ধান্ত| তোমরাই আমাকে স্বপ্নটি সম্বন্ধে বলবে এবং তার ব্যাখ্যা দেবে| তোমরা যদি এটা না করতে পারো তবে আমি তোমাদের কেটে টুকরো করে ফেলার আদেশ জারি করব| আমি আরো একটি আদেশ দেব যাতে তোমাদের ঘর-বাড়ি জঞ্জালের স্তূপে পরিণত হয| 6 কিন্তু তোমরা যদি আমার স্বপ্ন ও তার অর্থ আমাকে বল, তাহলে আমি তোমাদের প্রচুর পুরস্কার ও সম্মান প্রদান করব|” 7 কিন্তু সেই জ্ঞানী ব্যক্তিরা রাজাকে অনুরোধ করল তাঁর স্বপ্নের কথা আর একবার বলতে যাতে তারা সেটা ব্যাখ্যা করতে পারে| 8 তখন নবূখদ্নিত্সর বললেন, “তোমরা জানো য়ে আমার কথাই আদেশ এবং আমি জানি য়ে তোমরা আরো সময় লাভ করতে চাইছ| 9 তোমরা জানো য়ে আমার স্বপ্ন কিসের সম্বন্ধে ছিল তা বলতে না পারলে তোমরা শাস্তি পাবে| তোমরা ইতিমধ্যেই আমাকে মিথ্য়া কথা বলবার চএান্ত করেছ| তোমরা ভাবছ বেশী সময় নিলে আমি আমার আদেশের কথা ভুলে যাব| তাই এখন আমাকে বল আমার স্বপ্নটি কি যাতে আমি বুঝতে পারি য়ে তোমরা এর সঠিক অর্থ ব্যাখ্যা করতে পারবে!” 10 উত্তরে কল্দীয়রা রাজাকে বলল, “পৃথিবীতে এমন কোন লোক নেই য়ে রাজা যা চাইছেন তা করতে পারে| এমনকি সব চেয়ে মহান ও সব চেয়ে শক্তিশালী রাজাও কোন মন্ত্রবেত্তা, যাদুকর অথবা কোন কল্দীয়কে কখনও এরকম কথা জিজ্ঞাসা করেন নি| 11 রাজা এমন একটি কঠিন কথা বলছেন যা বস্তুতঃ অসম্ভব| কেবলমাত্র দেবগণই, যারা মানুষের মধ্যে থাকেন না, এমন কথা বলতে পারেন|” 12 যখন রাজা একথা শুনলেন, তিনি প্রচণ্ড রেগে গেলেন| তাই তিনি বাবিলের সমস্ত জ্ঞানী লোকদের হত্যা করার আদেশ দিলেন| 13 নবূখদ্নিত্সরের আদেশের কথা ঘোষণা করা হল| রাজার অনুচররা দানিয়েল ও তার সঙ্গীদের হত্যা করার জন্য অনুসন্ধান করতে লাগল| 14 রাজসেনাপতি অরিয়োক যখন বাবিলের জ্ঞানী মানুষদের হত্যার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন তখন দানিয়েল তার কাছে এসে বিবেচকের মত নম্রভাবে কথা বললেন| 15 দানিয়েল অরিয়োককে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন রাজা এমন নিষ্ঠুর আদেশ জারি করলেন?”তখন অরিয়োক রাজার স্বপ্নের ব্যাপারে সমস্ত বৃত্তান্ত দানিয়েলকে বুঝিয়ে বললেন| 16 দানিয়েল রাজা নবূখদ্নিত্সরের কাছে গেলেন এবং তাঁর কাছ থেকে সাক্ষাত্কারের সময় দিতে বললেন যাতে তিনি রাজার স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে দিতে পারেন| 17 দানিয়েল বাড়ি ফিরে এসে তাঁর সঙ্গী হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়কে সব খুলে বললেন| 18 দানিয়েল তাঁর বন্ধুদের স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে বললেন যাতে ঈশ্বর দয়া করে অন্যদের কাছ থেকে যা লুকিয়ে রাখা হয়েছে তা তাদের বলেন| তাহলে দানিয়েল ও তাঁর সঙ্গীদের বাবিলের অন্যান্য জ্ঞানী মানুষদের সঙ্গে মরতে হবে না| 19 রাত্রি বেলা এক দর্শনে ঈশ্বর সেই নিগূঢ় বিষয় দানিয়েলের কাছে প্রকাশ করলেন| তখন দানিয়েল ঈশ্বরকে তাঁর দয়ার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে তাঁর গুণগান করলেন| 20 দানিয়েল বললেন,“ঈশ্বরের নাম চির কাল ধন্য হোক! ক্ষমতা ও জ্ঞান তাঁর অঙ্গীভূত! 21 তিনি সময় ও ঋতুসমূহ পরিবর্তন করেন| তিনি রাজাদের নিয়োগ করেন এবং তিনিই তাদের সরিয়ে দেন| তিনি রাজাদের ক্ষমতা দেন ও তাদের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেন! তিনি মানুষকে জ্ঞান দেন যাতে তারা জ্ঞানী হয়ে ওঠে, তিনি তাদের শিক্ষা দেন যাতে তারা জ্ঞান লাভ করে| 22 তিনি সেই সব গভীর ও গুপ্ত বিষয় প্রকাশ করেন য়েগুলো বোঝা শক্ত| তিনি আলো ধরে থাকেন, তাই তিনি জানেন অন্ধকারে কি আছে| 23 আমার পিতৃপুরুষের ঈশ্বর, আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাই ও তোমার প্রশংসা করি| তুমি আমাকে জ্ঞান ও ক্ষমতা দিয়েছো| আমি তোমার কাছে যা জানতে চেয়েছি তা তুমি আমার কাছে প্রকাশ করেছ| তুমি আমাদের রাজার স্বপ্নের কথা বলেছ|” 24 তখন দানিয়েল অরিয়োকের কাছে গিয়ে বললেন, “বাবিলের জ্ঞানী মানুষদের হত্যা করবেন না| আমাকে রাজার কাছে নিয়ে চলুন| আমি রাজাকে তাঁর স্বপ্ন ও এর অর্থ কি ব্যাখ্যা করে বলব|” 25 অরিয়োক সঙ্গে সঙ্গে দানিয়েলকে রাজার কাছে নিয়ে গেলেন| অরিয়োক রাজাকে বললেন, “আমি যিহূদার নির্বাসিতদের মধ্যে এমন এক জনকে খুঁজে পেয়েছি য়ে রাজার স্বপ্নের অর্থ ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হবে|” 26 রাজা দানিয়েলকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি আমাকে বলতে পারবে আমার স্বপ্নটি কি ও তার অর্থ কি?” 27 দানিয়েল উত্তর দিলেন, “রাজা নবূখদ্নিত্সর, আপনি য়ে গুপ্ত জিনিষগুলির কথা জানতে চেয়েছেন তা কোন জ্ঞানী, কোন যাদুবিদ বা কোন জ্যোতিষীর পক্ষে বলা সম্ভব নয়| 28 কিন্তু স্বর্গে এক জন ঈশ্বর আছেন যিনি মানুষের কাছে গুপ্ত বিষয় প্রকাশ করেন| ঈশ্বর রাজাকে তাঁর স্বপ্নের মাধ্যমে দেখিয়েছেন অদূর ভবিষ্যতে কি ঘটবে| এটাই ছিল আপনার স্বপ্ন এবং এইগুলিই আপনি বিছানায় শুয়ে দেখেছিলেন: 29 মহারাজ আপনি বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছিলেন ভবিষ্যতে কি হবে| ঈশ্বর মানুষের কাছে গুপ্তকথা প্রকাশ করেন এবং তিনিই আপনাকে দেখিয়েছেন ভবিষ্যতে কি হবে| 30 ঈশ্বর আমাকেও এই গুপ্ত কথা জানিয়েছেন| তার অর্থ এই নয় য়ে আমি অন্যান্যদের তুলনায় বেশী জ্ঞানী| তিনি একথা আমার কাছে প্রকাশ করেছেন যাতে আপনি আপনার স্বপ্নের অর্থ বুঝতে পারেন ও আপনার মনের চিন্তা বুঝতে পারেন| 31 “মহারাজ, স্বপ্নে আপনি আপনার সামনে এক বিশাল মূর্ত্তিকে দেখেছিলেন| সেই মূর্ত্তিটি ছিল প্রকাণ্ড এবং চকচকে| এই মূর্ত্তি দেখলে য়ে কেউ বিস্মযে তার চোখ বিস্তারিত করে ফেলবে| 32 মূর্ত্তিটির মাথা ছিল খাঁটি সোনার, বুক ও হাতগুলো এবং করযুগল ছিল রূপার| পেট ও ঊরু ছিল পিতলের| 33 পায়ের নিচের দিক ছিল লোহার| সেই মূর্ত্তিটির পায়ের পাতা ছিল লোহা এবং মাটির মিশ্রনে তৈরী| 34 মূর্ত্তিটির দিকে তাকিয়ে থাকা কালীন আপনি এক টুকরো পাথর দেখেছিলেন য়েটা একটা পর্বত থেকে কেটে বের করা, কোন ব্যক্তির দ্বারা নয়| সেই পাথরের টুকরোটি এসে মূর্ত্তিটির লোহা এবং মাটির পায়ে আঘাত করল এবং তাদের সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে দিল| 35 এরপর লোহা, মাটি, পিতল, রূপা ও সোনা সব কিছু এক সঙ্গে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল| তারপর এগুলো গ্রীষ্মকালীন শস্যাদি মাড়াবার জায়গায কিছুই ফেলে না রেখে তুষের মতো বাতাসের সঙ্গে উড়ে গেল| তারপর সেই পাথরের খণ্ডটি এক বিরাট পর্বতের আকার নিল ও সারা পৃথিবী ঢেকে ফেলল| 36 “এই ছিল আপনার স্বপ্ন| এখন আমরা আপনাকে বলব এর অর্থ কি| 37 মহারাজ, আপনি হলেন সমস্ত রাজাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ| ঈশ্বর আপনাকে রাজত্ব, পরাএম, শক্তি ও মহিমা দিয়েছেন| 38 যেখানে মানুষ, বন্য পশু ও পাখীরা বাস করে ঈশ্বর আপনাকে সেই সমস্ত জায়গার ওপর শাসন করবার ক্ষমতা দিয়েছেন| মহারাজ আপনিই হলেন সেই মূর্ত্তির সোনার মাথাটি| 39 “আপনার পরে য়ে রাজ্যের উত্থান হবে তা হল সেই মূর্ত্তির রূপার অংশটি| কিন্তু সেই রাজ্য আপনার মত মহান হবে না| এরপর একটি তৃতীয় রাজ্য আসবে| এটি হল মূর্ত্তির পিতলের অংশটি| এটি পুরো পৃথিবীর ওপর শাসন করবে| 40 চতুর্থ রাজ্য লৌহবত্ দৃঢ় হবে| চতুর্থ রাজ্যটি অন্য আর সমস্ত রাজ্যের ধ্বংসের কারণ হবে য়েমন লোহা সব কিছু টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে দেয| 41 “আপনি দেখেছেন য়ে মূর্ত্তিটির পায়ের পাতার খানিকটা ছিল কুমোরের মাটি দিয়ে তৈরী এবং খানিকটা লোহার তৈরী| এর অর্থ হল এটা হবে একটা বিভক্ত রাজ্য কারণ আপনি মাটির সঙ্গে লোহার মিশ্রন দেখেছেন| 42 তাই চতুর্থ রাজ্যটির একটা অংশ হবে লোহার মত দৃঢ় ও অপর অংশটি হবে মাটির মত ভঙ্গুর| 43 আপনি মাটির সাথে লোহার মিশ্রণ দেখেছেন কিন্তু মাটি ও লোহা সম্পূর্ণ ভাবে মেশে না| তাই চতুর্থ রাজ্যের লোকরা অন্তর্বিবাহ করবে| কিন্তু তারা ঐক্যবদ্ধ লোকের মত হবে না| 44 “চতুর্থ রাজ্যের রাজাদের সময় স্বর্গের ঈশ্বর আর একটি রাজ্য স্থাপন করবেন| এই রাজ্যটি চির কালের জন্য থাকবে| এটি ধ্বংস হবে না এবং এটি সেই জাতীয় রাজ্য হবে না য়েটা একটি জাতি থেকে আর একটিকে দেওয়া হবে| এই রাজ্য অন্য সমস্ত রাজ্যকে ধ্বংস করে ফেলবে কিন্তু নিজে চিরস্থায়ী হবে| 45 “এটাই হল সেই পাথরের টুকরোটা য়েটা আপনি দেখেছিলেন| আপনা আপনি পর্বত কেটে বেরিয়ে এসেছিল এবং তারপর লোহা, পিতল, মাটি, রূপো ও সোনা সব কিছুকে টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে দিয়েছিল| এই ভাবেই ঈশ্বর আপনাকে দেখিয়েছেন ভবিষ্যতে কি হবে| স্বপ্নটি সত্যি ও আপনি এর ব্যাখ্যাকে সঠিক বলে বিশ্বাস করতে পারেন|” 46 তখন নবূখদ্নিত্সর মাথা নীচু করে দানিয়েলের সামনে নতজানু হলেন এবং দানিয়েলকে সম্মান জানাবার জন্য সুগন্ধি নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে আদেশ দিলেন| 47 তারপর রাজা দানিয়েলকে বললেন, “আমি নিশ্চিত য়ে তুমি এবং তোমার বন্ধুদের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈশ্বর হলেন সব চেয়ে পরাএমী| এবং তিনি সব রাজার প্রভু| মানুষ যা জানতে পারে না ঈশ্বর তা বলে দেন| আমি জানি এটা সত্য কারণ তুমি আমাকে এই গুপ্ত বিষয় প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছো|” 48 তারপর রাজা দানিয়েলকে সম্মানিত করলেন এবং তাঁকে প্রচুর বহুমূল্য উপহার দিলেন| নবূখদ্নিত্সর তাঁকে সমগ্র বাবিল প্রদেশের শাসনকর্তা হিসেবে নিয়োগ করলেন| তাঁকে বাবিলের সমস্ত জ্ঞানী মানুষের অধিপতি করা হল| 49 দানিয়েল রাজাকে বললেন শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে প্রদেশের শাসনকার্য়ে নিয়োগ করতে এবং দানিয়েল য়েমন চেয়েছিলেন রাজা তাই করলেন| এবং দানিয়েল নিজে রাজার এক জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে রাজদ্বারে থাকলেন|
1 রাজা নবূখদ্নিত্সর একটি সোনার মূর্ত্তি তৈরী করলেন| মূর্ত্তিটি ছিল 60 হাত উঁচু এবং 6 হাত চওড়া| তারপর তিনি সেই মূর্ত্তিটি বাবিল প্রদেশে দূরা সমতলের ওপর স্থাপন করলেন| 2 তারপর রাজা প্রাদেশীয় রাজ্যপাল, উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মচারীগণ, উপদেশকগণ, কোষাধ্যক্ষগণ, বিচারকগণ, শাসকগণ এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের ঐ মূর্ত্তির উত্সর্গীকরণ অনুষ্ঠানে আসতে আদেশ দিলেন| 3 তাই তারা সবাই এলেন এবং নবূখদ্নিত্সরের স্থাপিত মূর্ত্তির সামনে দাঁড়ালেন| 4 তারপর রাজার ঘোষক উচ্চকণ্ঠে বললেন, “হে বিভিন্ন দেশ ও নানা ভাষাবিদ্গণ তোমরা আমার কথা শোন| তোমাদের এই আদেশ দেওয়া হচ্ছে: 5 য়ে মূহুর্তে শিঙা, বাঁশি, বীণা এবং অন্যান্য সমস্ত বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ শুনবে তখনই তোমরা আভূমি নত হবে এবং রাজার স্থাপনা করা মূর্ত্তির পূজো করবে| 6 যদি কোন ব্যক্তি আভূমি নত না হয়ে পূজো করে, তাকে সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হবে|” 7 তাই, য়ে মূহুর্তে শিঙা, বাঁশি, বীণা এবং অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের শব্দ শোনা গেল, সমস্ত দেশসমূহ ও সমস্ত ভাষাবিদগণ আভূমি নত হল এবং নবূখদ্নিত্সরের প্রতিষ্ঠিত মূর্ত্তির পূজা করল| 8 সেই সময়, কিছু কল্দীয় লোকরা রাজার কাছে এল এবং ইহুদীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে লাগল| 9 তারা রাজা নবূখদ্নিত্সরকে বলল, “মহারাজ দীর্ঘজীবি হোন! 10 মহারাজ আপনি আদেশ করেছিলেন য়ে শিঙা, বাঁশি, বীণা ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের বাদন শোনা মাত্র সকলকে মাথা নত করে সোনার মূর্ত্তিটির পূজা করতে| 11 আপনি আরো বলেছিলেন য়ে যদি কেউ এই মূর্ত্তির পূজা না করে তাহলে তাদের অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হবে| 12 কিন্তু হে মহারাজ, কিছু ইহুদী আপনার আদেশ অমান্য করেছে| আপনি পূর্বে তাদের গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারীর পদে বহাল করেছিলেন| তারা হল শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগো| তারা আপনার দেবতার পূজা করে নি| তারা আভূমি নত হয়নি এবং আপনার প্রতিষ্ঠিত সোনার মূর্ত্তিটি পূজো করে নি|” 13 তখন রাজা ভীষণ রুদ্ধ হয়ে শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে ডেকে পাঠালেন| তাদের রাজার সামনে আনা হল| 14 নবূখদ্নিত্সর ঐ লোকেদের বললেন, “শদ্রক, মৈশক এবং অবেদ্-নগো, এটা কি সত্যি য়ে তোমরা আমার দেবতাদের পূজো কর না আর তোমরা আভূমি নত হও নি এবং আমার প্রতিষ্ঠিত সোনার মূর্ত্তিকে পূজো করনি? 15 এবার যখনই তোমরা শিঙা, বীণা ও অন্যান্য বাদ্যয়ন্ত্রের শব্দ শুনবে তখনই তোমরা মাথা নত করে সোনার মূর্ত্তির পূজা করবে| যদি তোমরা এই মূর্ত্তির পূজা করতে রাজী থাকো তবে ভাল, নয়তো তোমাদের অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হবে| তখন কোন দেবতাই তোমাদের আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না!” 16 শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগো রাজাকে বলল, “এর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন আমাদের নেই| 17 যদি আপনি আমাদের অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করেন তাহলে আমরা য়ে দেবতার পূজা করি তিনি আমাদের রক্ষা করবেন| তিনি ইচ্ছা করলে আমাদের আপনার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন| 18 কিন্তু যদি আমাদের ঈশ্বরও আমাদের রক্ষা না করেন, তাহলেও আমরা আপনার দেবতার সেবা করব না এবং আপনার প্রতিষ্ঠিত সোনার মূর্ত্তির পূজাও করব না|” 19 তখন নবূখদ্নিত্সর ভীষণ রেগে গেলেন এবং শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোর দিকে ভর্ত্সনাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন| তিনি অগ্নিকুণ্ডটিকে সাতগুণ বেশী উত্তপ্ত করবার আদেশ দিলেন| 20 তারপর নবূখদ্নিত্সর তাঁর সব চেয়ে শক্তিশালী সৈন্যদের কয়েক জনকে শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে বেঁধে ফেলে তাদের অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিতে আদেশ দিলেন| 21 তাই সৈন্যরা আঙরাখা, পায়জামা, টুপি ও অন্যান্য বস্ত্রে পূর্ণসজ্জিত শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে বেঁধে ফেলল এবং জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে ফেলে দিল| 22 রাজার আদেশ এত নিষ্ঠুর ছিল বলে এবং অগ্নিকুণ্ডটি এত উত্তপ্ত ছিল বলে য়ে সৈন্যরা শদ্রক, মৈশক এবং অবেদ্-নগোকে নিয়ে গিয়েছিল তারাই আগুন পুড়ে মারা গেল| 23 শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে দৃঢ় ভাবে বেঁধে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল| 24 সেই সময় নবূখদ্নিত্সর বিস্ময়ে লাফিয়ে উঠলেন| তিনি তাঁর উপদেশকদের জিজ্ঞাসা করলেন, “এটা কি ঠিক য়ে আমরা মাত্র তিন জনকে বেঁধে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করেছিলাম?”উপদেশকরা বললেন, “হ্যাঁ, মহারাজ|” 25 রাজা বললেন, “দেখ, আমি দেখছি চার জন মানুষ আগুনের ভেতর হেঁটে বেড়াচ্ছে| তারা বাঁধনমুক্ত এবং তারা কেউই আগুনে পুড়ে যাচ্ছে না| চতুর্থ জনকে দেখতে য়েন এক জন দেবদূতের মতো|” 26 তখন নবূখদ্নিত্সর অগ্নিকুণ্ডের মুখের কাছে গিয়ে চিত্কার করে বললেন, “পরাত্পর ঈশ্বরের অনুগত শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগো তোমরা এখানে বেরিয়ে এসো!”তাই শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগো আগুনের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো| 27 তারা বেরিয়ে আসার পর প্রাদেশীয় রাজ্যপাল, উচ্চপদস্থ কর্মচারী, অধিপতি ও রাজার উপদেশকরা তাদের ঘিরে ধরল| তারা দেখল য়ে আগুন শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোর আঙরাখা অথবা অন্য কিছু, এমন কি তাদের মাথার একটা চুলও পোড়ায়নি এবং তারা য়ে আগুনের কাছে ছিল এমন কোন গন্ধও তাদের গা থেকে বেরোচ্ছিল না| 28 এরপর নবূখদ্নিত্সর বললেন, “শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোর ঈশ্বরের প্রশংসা করো| তিনি তাঁর দূত পাঠিয়েছেন এবং তাঁর দাসদের আগুন থেকে রক্ষা করেছেন| এই তিন জন লোক তাদের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত ছিল| তারা আমার আদেশ অমান্য করে মৃত্যুবরণ করতেও রাজী ছিল, কিন্তু তবুও তারা অন্য কোন দেবতার আরাধনা করতে রাজী হয়নি| 29 তাই আমি এই নিয়ম করলাম: কোন দেশের এবং কোন ভাষার কোন ব্যক্তি যদি শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোর ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন কথা বলে তবে তাদের টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা হবে| তাদের বাড়ি-ঘর সর্বসাধারণের শৌচালয় হয়ে উঠবে কারণ অন্য কোন দেবতা তাঁর লোকদের এভাবে বাঁচাতে পারেন না|” 30 তখন রাজা শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজের ভার দিয়ে বাবিল প্রদেশে পাঠালেন|
1 পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী অনেক দেশ ও নানা ভাষার মানুষের কাছে নবূখদ্নিত্সর এই চিঠি পাঠালেন|অভিবাদন: 2 পরাত্পর ঈশ্বর আমার জন্য য়ে চমত্কার ও আশ্চর্য়্য় সব কাজ করেছেন তা আমি তোমাদের কাছে বলতে পেরে খুশী| 3 ঈশ্বর বহু আশ্চর্য়্য় সব কাজ করেছেন| ঈশ্বরের শক্তি প্রকাশ পেয়েছে বিস্ময়কর জিনিষে| ঈশ্বরের রাজ্য চিরন্তন, ঈশ্বরের শাসন পুরুষানু-এমে বজায় থাকবে| 4 আমি নবূখদ্নিত্সর, আমার প্রাসাদে সাফল্য নিয়ে শান্তিতে ছিলাম| 5 আমি একটি স্বপ্ন দেখে ভীত হলাম| আমি যখন বিছানায় শুয়েছিলাম তখন আমার মনে চিন্তা এসেছিল এবং আমি আমার মনে এমন দর্শন পেয়েছিলাম যা আমাকে ভীত করে তুলল| 6 তাই আমি বাবিলের সমস্ত জ্ঞানী মানুষদের আমার কাছে নিয়ে আসার আদেশ দিলাম| কেন? যাতে তারা আমার স্বপ্নটির তাত্পর্য় বলতে পারে| 7 যখন যাদুবিদরা, মায়াবীরা, কল্দীয়রা এবং ভবিষ্যতবক্তারা এলো, তখন আমি তাদের স্বপ্নের কথা বললাম| কিন্তু তারা এর অর্থ বলতে পারল না| 8 অবশেষে দানিয়েল এল| (আমি আমার দেবতার নামানুসারে দানিয়েলকে বেলটশত্সর নাম দিয়েছি| পবিত্র ঈশ্বরদের আত্মা তার মধ্যে বর্তমান রযেছে|) আমি দানিয়েলকে আমার স্বপ্নের কথা বললাম| 9 আমি বললাম,তুমি হচ্ছ বেলটশত্সর, মন্ত্রবেত্তাদের রাজা| আমি জানি য়ে পবিত্র দেবতাদের আত্মা তোমার মধ্যে বর্তমান| আমি জানি এমন কোন গুপ্ত বিষয নেই যা তুমি বুঝতে পারবে না| এই ছিল আমার স্বপ্ন| বল এর অর্থ কি| 10 যখন আমি বিছানায় শুয়েছিলাম তখন আমি এই স্বপ্ন দর্শন করেছিলাম: পৃথিবীর কেন্দরে আমি একটি গাছকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম য়েটি খুব উঁচু ছিল| 11 গাছটি দীর্ঘ ও মজবুত হয়ে বেড়ে উঠেছিল ও তার উপরিভাগ আকাশকে স্পর্শ করেছিল| পৃথিবীর য়ে কোন স্থান থেকে গাছটিকে দেখা য়েতে পারত| 12 গাছের পাতাগুলি ছিল সুন্দর ও গাছটি সুস্বাদু ফলে ভরে ছিল যা সকলকে পর্য়াপ্ত পরিমাণে আহার জোগান দিত| বন্য প্রাণীরা সেই গাছের তলায় আশ্রয় নিয়েছিল এবং পাখীরা তার ডালে বাসা বেঁধে ছিল| প্রতিটি প্রাণী এই গাছ থেকে তার খাদ্য পেত| 13 আমি যখন বিছানায় শুয়ে এই সব জিনিস দেখছিলাম তখন দেখলাম স্বর্গ থেকে এক পবিত্র দূত নেমে আসছেন| 14 তিনি চিত্কার করে বললেন, ‘গাছটি কেটে ফেল এবং এর ডালগুলিও কেটে ফেল| এর সমস্ত পাতা খসিযে দাও ও ফলগুলিকে ছড়িয়ে ফেলে দাও| য়ে সমস্ত পশুরা গাছের তলায় রয়েছে তারা পালিয়ে যাবে আর গাছের ডালে য়ে পাখীরা রযেছে তারা উড়ে যাবে| 15 কিন্তু এর কাণ্ড ও শিকড়গুলিকে মাটিতে থাকতে দাও| এটা লোহা ও পিতলের শিকল দিয়ে ঘিরে দাও| কাণ্ড ও শিকড়গুলি মাঠে ঘাসের মধ্যে থেকে যাক| সে মাঠের মধ্যে বন্য প্রাণী ও গাছদের সঙ্গে থাকুক আর শিশিরে ভিজে যাক| 16 সে আর মানুষের মত চিন্তা করতে সক্ষম হবে না| তার মন হবে একটি পশুর মতো| এই রকম অবস্থায় থাকতে থাকতে, সাতটি ঋতু শেষ হয়ে যাবে|’ 17 পবিত্র দূত এই শাস্তিটি ঘোষণা করলেন| কেন? যাতে পৃথিবীর সমস্ত লোক জানতে পারে য়ে, পরাত্পর, মানবজাতির রাজত্বগুলির ওপর শাসন করেন| ঈশ্বর য়ে ব্যক্তিকে চান তাকে সেই রাজত্ব দেন| এবং ঈশ্বর বিনয়ী লোকদের এই রাজ্যগুলির শাসনের জন্য মনোনীত করেন| 18 এইগুলোই আমি, নবূখদ্নিত্সর আমার স্বপ্নে দেখেছিলাম| এখন বেলটশত্সর আমাকে বল এর অর্থ কি| আমার রাজ্যে কোন জ্ঞানী মানুষই এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি| কিন্তু বেলটশত্সর, তুমি এর ব্যাখ্যা দিতে পারবে কারণ তোমার মধ্যে পবিত্র দেবতাদের আত্মা রযেছে| 19 তখন দানিয়েল অল্প ক্ষণের জন্য চুপ করে রইলেন| তিনি যা ভাবছিলেন তাতে তিনি উদ্বিগ্ন হলেন| তাই রাজা বললেন, “বেলটশত্সর, স্বপ্নটি এবং তার অর্থ বলতে ভয় পেয়ো না|”তখন বেলটশত্সর রাজাকে উত্তর করল, “স্বপ্নটি য়েন আপনার শএুদের বিষয়ে হয়| আর এর অর্থও য়েন হয় তাদের জন্য যারা আপনার বিপক্ষে রযেছে| 20 আপনি স্বপ্নে একটি গাছ দেখেছিলেন| সেই গাছ মজবুত ও বিশাল হয়ে বেড়ে উঠেছিল এবং তার মাথা ছুঁযে গিয়েছিল আকাশকে| একে পৃথিবীর য়ে কোন স্থান থেকে দেখা যাচ্ছিল| এতে ছিল সুন্দর পাতা ও প্রচুর ফলের সম্ভার| এর ফল থেকে সবাই প্রচুর খাদ্যও পাচ্ছিল| এটা ছিল বন্য জন্তুদের বাসা ও এর ডালে ছিল পাখীর বাসা| এটাই ছিল সেই গাছ যা আপনি দেখেছিলেন| 21 22 মহারাজ আপনি হলেন সেই গাছ| আপনি মহান ও শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন| আপনিই সেই দীর্ঘকায় গাছ যার মাথা আকাশ ছোঁযা আর আপনার ক্ষমতা পৃথিবীর দূর-দূরান্তে পৌঁছেছে| 23 “মহারাজ আপনি একজন পবিত্র দূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখেছেন| তিনি বললেন, ‘গাছটিকে কেটে ফেলো এবং তাকে ধ্বংস কর, কিন্তু তার কাণ্ডের চারপাশে লোহা এবং পেতলের একটি শেকল দাও এবং কাণ্ডটিকে এবং এর শিকড়গুলিকে মাটিতে থাকতে দাও| মাঠে ঘাসের ওপর এটাকে থাকতে দাও যাতে শিশির পড়ে ওটা ভিজে যায়| বন্য জন্তুদের মধ্যে সে বেঁচে থাকুক এবং এই ভাবে সাতটি ঋতু শেষ হয়ে যাবে|” 24 “মহারাজ এই হল আপনার স্বপ্নের অর্থ| পরাত্পরের আজ্ঞা অনুসারে আপনার সঙ্গে এগুলি ঘটবে: 25 রাজা নবূখদ্নিত্সর, আপনাকে মানুষের কাছ থেকে দূরে য়েতে বাধ্য করা হবে| আপনাকে বন্য পশুদের মধ্যে থাকতে হবে ও গো-পালের মত ঘাস খেতে হবে| এবং আপনি শিশিরে ভিজে যাবেন| সাতটি ঋতু পেরিয়ে গেলে আপনার এই শিক্ষা হবে| আপনি শিখবেন য়ে পরাত্পর মানুষের ওপর কর্তৃত্ব করেন এবং তিনি যাকে চান তাকেই রাজত্ব দেন| 26 “কাণ্ড এবং শিকড়গুলিকে মাটিতে রেখে দেওয়ার আজ্ঞার অর্থ হল: আপনার রাজ্য আপনারই থাকবে| এটা হবে তখন যখন আপনি জানবেন য়ে পরাত্পর লোকদের চেয়ে অনেক বেশী ক্ষমতাশালী| 27 তাই, হে মহারাজ, অনুগ্রহ করে আমার উপদেশ শুনুন| অথবা আপনার ভালোর জন্য পাপ কাজ বন্ধ করুন এবং ভালো লোক হোন| মন্দ কাজ বন্ধ করুন এবং দরিদ্রদের প্রতি দয়া দেখান| তাহলেই আপনি শান্তিতে থাকতে পারবেন|” 28 এগুলো সবই নবূখদ্নিত্সরের বিষয়ে ফলে গেল| 29 এই স্বপ্ন দেখার বারো মাস পর রাজা নবূখদ্নিত্সর যখন বাবিলে তাঁর প্রাসাদের ছাদের ওপর হাঁটছিলেন তখন তিনি বললেন, “বাবিলের দিকে তাকিযে দেখ! আমি এই বিশাল শহর তৈরী করেছি| এটা হল আমার প্রাসাদ! আমি এই বিশাল প্রাসাদ আমার ক্ষমতায় গড়ে তুলেছি যাতে বোঝা যায় আমি কত মহান!” 30 31 তাঁর কথাগুলো যখন মুখের মধ্যেই ছিল তখন একটি কণ্ঠস্বর স্বর্গ থেকে বলল, “রাজা নবূখদ্নিত্সর, ঈশ্বর তোমাকে এটি বলেছেন: রাজা হিসেবে তোমার ক্ষমতা তোমার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হল| 32 তোমাকে মানুষের কাছ থেকে দূরে চলে য়েতে বাধ্য করা হবে| তুমি বন্য পশুদের সাথে বাস করবে| তুমি একটি গরুর মতো ঘাস খেয়ে জীবন ধারণ করবে| এই শিক্ষা পেতে সাতটি ঋতু পেরিয়ে যাবে| তখন তুমি জানবে য়ে পরাত্পর মানুষের রাজত্বের ওপর কর্তৃত্ব করেন এবং তিনি যাকে চান তাকেই রাজত্ব দেন|” 33 ঐ সব কিছু তক্ষুনি ঘটে গিয়েছিল| নবূখদ্নিত্সর মানবসমাজ থেকে দূরে চলে য়েতে বাধ্য হয়েছিলেন| তিনি গরুর মত ঘাস খেতে শুরু করেছিলেন| তাঁর শরীর শিশিরে ভিজে গিয়েছিল| তাঁর চুল লম্বা হয়ে ঈগল পাখীর পালকের মতো হয়ে গিয়েছিল এবং তাঁর নখ পাখীর নখের মতো বেড়ে গিয়েছিল| 34 তারপর সেই সময়ের শেষে আমি, নবূখদ্নিত্সর, স্বর্গের দিকে বিনীতভাবে তাকিয়েছিলাম এবং আমি আর একবার প্রকৃতিস্থ হলাম| তখন আমি পরাত্পরের গুণগান করেছিলাম| ঈশ্বর যিনি অনন্তজীবি, তাঁকে প্রশংসা ও সম্মানিত করলাম|কারণ ঈশ্বরের শাসন চিরন্তন| তাঁর রাজত্ব পুরুষানুক্রমে স্থায়ী| 35 পৃথিবীর মানুষ বস্তুত গুরুত্বপূর্ণ নয়| স্বর্গীয ক্ষমতাসমূহ ও পৃথিবীর মানুষদের প্রতি ঈশ্বর যা চান তা সবই তিনি করেন| এমন কেউ নেই য়ে তার শক্তিশালী হাতকে থামাতে পারে এবং তার কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে| 36 তাই সেই সময় ঈশ্বর আমাকে শুভ বুদ্ধি ফিরিযে দিলেন| তিনি আমাকে রাজার সম্মান ও ক্ষমতাও ফিরিয়ে দিলেন| আমার উপদেষ্টাগণ ও রাজবংশীয লোকরা আবার আমার কাছে উপদেশের জন্য এসেছিল| আমি আগের চেয়েও আরো মহান ও বেশী পরাএমী হয়ে উঠেছিলাম| 37 এখন আমি, নবূখদ্নিত্সর স্বর্গের রাজার প্রশংসা ও সমাদর করি| তিনি যা করেন তাই সঠিক ও ন্যায্য| এবং তিনিই অহঙ্কারী মানুষদের বিনযীতে পরিণত করেন|
1 রাজা বেল্শত্সর তাঁর 1,000 উচ্চপদস্থ কর্মচারীর জন্য এক ভোজসভার আয়োজন করেছিলেন ও তাদের সঙ্গে তিনি দ্রাক্ষারস পান করেছিলেন| 2 দ্রাক্ষারসের প্রভাবে তিনি তাঁর ভৃত্যদের আদেশ দিলেন সেই সব সোনার ও রূপার পাত্রগুলি আনতে য়েগুলি নবূখদ্নিত্সর, তাঁর পিতামহজেরুশালেমের মন্দির থেকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন| রাজা চেয়েছিলেন তার রাজবংশীয়রা, পত্নীরা ও উপপত্নীরা য়েন ওইসব পাত্র থেকে দ্রাক্ষারস পান করে| 3 তাই তারা জেরুশালেমে অবস্থিত ঈশ্বরের মন্দির থেকে সোনার পাত্রগুলি য়েগুলি নিয়ে আসা হয়েছিল সেগুলি নিয়ে এলো| এবং রাজা ও তাঁর কর্মচারীরা, তাঁর পত্নীরা ও উপপত্নীরা সেই পাত্রগুলি থেকে পান করেছিলেন| 4 তারা দ্রাক্ষারস পান করার সময় সোনা, রূপা, পিতল, লোহা, কাঠ ও পাথরের তৈরী দেবমূর্ত্তির গুণগান করছিলেন| 5 রাজা যখন তাকালেন, তখন হঠাত্ একটি মানুষের হাত আবির্ভূত হয়েছিল এবং বাতি-স্তম্ভের কাছে দেওয়ালের পোঁচড়ার ওপর লিখতে শুরু করেছিল| 6 রাজা বেল্শত্সর এই দৃশ্য দেখে এত ভীত হয়ে পড়লেন য়ে তাঁর মুখ ভয়ে সাদা হয়ে গেল এবং তাঁর হাঁটুতে হাঁটু ঠোকাঠুকি লেগে গেল| তাঁর পা এত দুর্বল মনে হল য়ে তিনি উঠে দাঁড়াতেও পারলেন না| 7 তখন রাজা সমস্ত যাদুবিদগণ, ভবিষ্যত্ বক্তাসমূহ এবং কল্দীয়দের তাঁর কাছে ডাকলেন| তিনি ঐ জ্ঞানী লোকদের বললেন, “যারা আমাকে এই লেখা পড়ে তার অর্থ ব্যাখ্যা করে দিতে পারবে আমি তাদের পুরস্কার দেব| আমি তাদের বেগুনী রঙের বস্ত্র দেব, তাদের গলায় সোনার হার দেব এবং তাকে আমার রাজ্য তৃতীয় শাসকের পদ দেব|” 8 তাই রাজার সমস্ত জ্ঞানী ব্যক্তিরা জড়ো হল| কিন্তু তারা লেখাটি পড়তে বা তার অর্থ বলতে পারল না| 9 রাজা বেল্শত্সর ভয় পেয়ে গেলেন| তাঁর মুখ চিন্তায় ও ভয়ে সাদা হয়ে গেল| রাজার কর্মচারীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ল| 10 তারপর রাণী সেই ভোজসভায় এলেন| তিনি রাজা ও রাজকর্মচারীদের কথা শুনে বললেন, “মহারাজ দীর্ঘজীবি হোন! ভয়ে আপনার মুখ সাদা হতে দেবেন না| 11 আপনার রাজ্যে এক জন মানুষ আছেন যাঁর মধ্যে পবিত্র দেবতাদের আত্মা বিদ্যমান| আপনার পিতার সময়ে, তিনি দেখিয়ে ছিলেন য়ে তিনি গুপ্তকথা বুঝতে সক্ষম| তিনি এও দেখিয়ে ছিলেন য়ে তিনি দেবতাদের মতই জ্ঞান ও বুদ্ধিতে পূর্ণ ছিলেন| পিতামহ এঁকে সমস্ত জ্ঞানী মানুষ, যাদুবিদ ও কল্দীযদের অধিপতি করে দিয়েছিলেন| 12 আমি য়ে মানুষটির কথা বলছি তার নাম দানিয়েল| রাজা তার নাম দিয়েছিলেন বেলটশত্সর| বেলটশত্সর খুব বুদ্ধিমান এবং তিনি অনেক বিষয় জানেন| তিনি স্বপ্নের তাত্পর্য় ব্যাখ্যা করতে পারেন, গুপ্ত বিষয প্রকাশ করতে পারেন এবং কঠিন সমস্যার সমাধান করতে পারেন| তিনিই এই দেওয়াল লিখনের অর্থ বলে দেবেন|” 13 তাই দানিয়েলকে রাজার কাছে আনা হল| রাজা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার নামই কি দানিয়েল যাকে আমার পিতা বন্দী করে যিহূদা থেকে এখানে নিয়ে এসেছিলেন? 14 আমি শুনেছি য়ে তোমার মধ্যে দেবতাদের আত্মা বিদ্যমান| আমি এও শুনেছি য়ে তুমি গুপ্ত কথা বুঝতে সক্ষম এবং তোমার অনেক বুদ্ধি আছে এবং তুমি খুব জ্ঞানী| 15 এই দেওয়ালের লিখন পড়ে তার অর্থ ব্যাখ্যা করবার জন্য আমার কাছে জ্ঞানী এবং যাদুবিদদের আনা হয়েছিল| কিন্তু তারা এটা করতে সক্ষম হল না| 16 আমি শুনেছি তুমি য়ে কোন জিনিস ব্যাখ্যা করতে পারো এবং য়ে কোন সমস্যার সমাধান করতে পারো| তুমি যদি দেওয়ালের এই লেখা পড়ে তার অর্থ আমার কাছে ব্যাখ্যা করতে পারো তাহলে আমি তোমাকে বেগুনী রঙের বস্ত্রাদি প্রদান করব ও তোমার গলায় একটি সোনার হার পরিযে দেব| এরপর তুমিই হবে আমার রাজ্যের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ শাসক|” 17 তখন দানিয়েল রাজাকে উত্তর দিল, “আপনার দান আপনার কাছে থাকুক বা ওটা আপনি অন্য কাউকে দিয়ে দিতে পারেন| আমি তবুও আপনাকে এই লেখা পাঠ করে তার অর্থ ব্যাখ্যা করে দেব| 18 “মহারাজ, পরাত্পর আপনার পিতামহ নবূখদ্নিত্সরকে এক জন মহান ও পরাক্রমী রাজা বানিয়ে ছিলেন| তাঁকে ঈশ্বর এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়েছিলেন| 19 অনেক দেশের এবং অনেক ভাষার লোকরা নবূখদ্নিত্সরকে ভয় পেত| কেন? কারণ পরাত্পর তাঁকে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজা বানিয়েছিলেন| নবূখদ্নিত্সর কাউকে মারতে চাইলে মেরে ফেলতেন আর বাঁচিয়ে রাখতে চাইলে বাঁচিয়ে রাখতেন| তিনি যাদের গুরুত্বপূর্ণ করতে চাইতেন তাদের করতেন এবং তিনি যাদের গুরুত্বহীন করতে চাইতেন তাদের গুরুত্বহীন করতেন| 20 “কিন্তু নবূখদ্নিত্সর জেদী হয়ে উঠলেন এবং দাম্ভিক ভাবে ব্যবহার করতে লাগলেন| তাই তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে তাঁর কাছ থেকে সিংহাসন ও তাঁর সমস্ত গৌরব কেড়ে নেওয়া হল| 21 নবূখদ্নিত্সর লোকদের ছেড়ে চলে য়েতে বাধ্য হলেন| তাঁর মানসিকতাকে একটি পশুর মনের মত করা হয়েছিল| তিনি বন্য গাধাদের সাথে বাস করতে লাগলেন এবং গরুর মতো ঘাস খেতে লাগলেন| তাঁর শরীর শিশিরে ভিজে গেল| এসব তত দিন পর্য়ন্ত ঘটল যতদিন না তিনি বুঝলেন য়ে পরাত্পর সমস্ত মানুষের রাজত্বের ওপর কর্তৃত্ব করেন এবং যাকে খুশী রাজ্য দেন| 22 কিন্তু বেল্শত্সর আপনি নবূখদ্নিত্সরের পৌত্র, আপনি যদিও এসবই জানেন তবু আপনি বিনয়ী হননি| 23 তার বদলে আপনি স্বর্গের ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন| আপনি প্রভুর মন্দির থেকে আনা পাত্রে আপনার রাজকর্মচারী, আপনার পত্নী ও উপপত্নীদের দ্রাক্ষারস পান করার আদেশ দিয়েছেন| আপনি সোনা, রূপা, পিতল, লোহা, কাঠ ও পাথরের তৈরী সেই সব দেবতাদের প্রশংসা করেছেন| তারা কিছু দেখতে পায় না, শুনতে পায় না বা বুঝতে পারে না| কিন্তু আপনি সেই ঈশ্বরকে সম্মান দেন নি যাঁর আপনার জীবন ও কর্মের ওপর নিয়ন্ত্রণ রযেছে| 24 তাই, এই কারণে ঈশ্বর এই হাতটি দেওয়ালে লেখবার জন্য পাঠিয়েছিলেন| 25 এই হল সেই কথাগুলো যা দেওয়ালের ওপর লেখা ছিল:মিনে, মিনে, তকেল, এবং উপারসীন, (গণিত, গণিত, তুলাতে পরিমিত ও খণ্ডিত) 26 “এই হল সেই সব শব্দের অর্থ: মিনে: ঈশ্বর আপনার রাজত্বের শেষ দিন গণনা করেছেন| 27 তকেল:আপনাকে তুলাদণ্ডে পরিমাপ করা হয়েছে এবং দেখা গেছে য়ে আপনার মধ্যে যথেষ্ট ধার্মিকতা নেই| 28 এবং উপারসীন:আপনার রাজ্য বিচ্ছিন্ন হয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে| তা এখন মাদীয় ও পারসীকদের মধ্যে বণ্ট্ন করা হবে|” 29 তখন বেল্শত্সর দানিয়েলকে বেগুনী বস্ত্রে ভূষিত করার আদেশ দিলেন| তার গলায সোনার হার পরিয়ে দেওয়া হল এবং তাকে রাজ্যের তৃতীয় উচ্চতম শাসক ঘোষণা করা হল| 30 সেই রাতেই বাবিলের লোকদের রাজা বেল্শত্সর হত হলেন| 31 মাদীয় দারিয়াবস,যিনি প্রায় 62 বছর বয়স্ক ছিলেন তিনি রাজত্বের ভার নিলেন|
1 দারিয়াবস ভাবলেন য়ে 120 জন রাজ্যপালকে তাঁর সম্পূর্ণ রাজত্বের দায়িত্ব দেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে| 2 এবং তিনি এই 120 জন রাজ্যপালকে তত্ত্বাবধান করবার জন্য তিন জন অধ্যক্ষ নিযুক্ত করলেন| দানিয়েল ছিলেন এই তিনজনের একজন| রাজা এদের নিযুক্ত করেছিলেন যাতে কেউ তাঁকে ঠকিয়ে রাজ্যের ক্ষতি না করতে পারে| 3 দানিয়েল তাঁর উত্কৃষ্ট চরিত্রের জন্য অন্য য়ে কোন অধ্যক্ষ অথবা রাজ্যপালের চেয়ে তাঁর পদে ভালো অবস্থায় ছিলেন| এতে রাজা এতই সন্তুষ্ট হলেন য়ে তিনি দানিয়েলকে সমগ্র রাজ্যের শাসক হিসেবে নিয়োগ করবেন বলে স্থির করলেন| 4 কিন্তু অন্য অধ্যক্ষ ও শাসকরা এই খবর শুনে ঈর্ষান্বিত হল| তাই দানিয়েল রাজার জন্য য়ে কাজ করছিলেন তার মধ্যে তারা দোষ খুঁজে বের করবার চেষ্টা করছিল| কিন্তু তারা তাঁর কাজে কোন দোষ-এুটি খুঁজে পেল না| দানিয়েল ছিলেন বিশ্বাসী| তিনি কখনও ইচ্ছে করে অথবা ভুলেও কোন ভুল কাজ করেন নি| 5 অবশেষে সেই লোকরা দেখল য়ে দানিয়েলকে দোষারোপ করার মতো কোন কারণই তারা খুঁজে পাবে না| তাই তারা ঠিক করল য়ে তারা রাজার কাছে দানিয়েলের ঈশ্বরের নীতি সম্পর্কিত ব্যাপারে অভিয়োগ করবে| 6 তাই ঐ দুজন অধ্যক্ষ ও শাসকরা দল বেঁধে রাজার কাছে গিয়ে বলল, “মহারাজ দারিয়াবস চিরজীবি হোন! 7 সমস্ত অধ্যক্ষগণ, গুরুত্বপূর্ণ রাজকর্মচারীগণ, মন্ত্রীগণ এবং রাজ্যপালরা একটি নির্দিষ্ট ব্যাপারে একমত হল| আপনি এ বিষযটিকে একটি আদেশ হিসাবে প্রচার করুন যা সকলে মানবে| এই আদেশটি হল য়ে পরবর্তী 30দিনের মধ্যে কেউ যদি রাজা ছাড়া অন্য কোন দেবতা বা মানুষের কাছে প্রার্থনা করে তবে তাকে সিংহের খাঁচায় নিক্ষেপ করা হবে| 8 মহারাজ আপনি এই আদেশ লেখা কাগজটিতে স্বাক্ষর করে এই আদেশটি অপরিবর্তিত রাখার ব্যবস্থা করুন, কেননা মাদীয ও পারসীকদের নিয়মানুসারে কোন আইন বা আদেশ বাতিল বা পরিবর্তন হয না|” 9 তাই রাজা দারিয়াবস এই আদেশপত্রটি সাক্ষর করলেন| 10 দানিয়েল, প্রত্যেক দিন তিন বার করে নতজানু হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতেন এবং তাঁর গুণগান করতেন| যখন তিনি এই আজ্ঞার কথা শুনলেন তিনি তাঁর বাড়ীর ভেতরে গিয়ে জেরুশালেমের দিকে খোলা জানালার কাছে গেলেন এবং নতজানু হয়ে প্রতি দিনের মতো ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন| 11 তখন ওই সব লোকরা দল বেঁধে দানিয়েলের বাড়ি গেল এবং তাঁকে প্রার্থনা করতে এবং ঈশ্বরের কাছে সাহায্য চাইতে দেখতে পেল| 12 তাই তারা রাজার কাছে গিয়ে তাঁকে তাঁর আদেশের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলল, “মহারাজ আপনি একটি আদেশ জারি করেছেন য়ে পরবর্তী 30 দিনের মধ্যে যদি কেউ রাজা ছাড়া অন্য কোন মানুষ বা দেবতার কাছে প্রার্থনা করে তবে তাকে সিংহের খাঁচায় নিক্ষেপ করা হবে| এবং আপনি আদেশটিতে স্বাক্ষরও করেছেন|”রাজা উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, এই আদেশটি মাদীয় ও পারসীকদের একটি আদেশ| এই আদেশ কখনও বাতিল করা বা বদলানো যায় না|” 13 তখন ঐ লোকরা বলল, “দানিয়েল নামক ওই ব্যক্তিটি আপনাকে অথবা য়ে আদেশ পত্রে আপনি স্বাক্ষর করেছেন, তাকে কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না| দানিয়েল যিহূদা থেকে আনা বন্দীদের একজন এবং সে আপনার আদেশ মানছে না| সে এখনও রোজ তিন বার করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছে|” 14 রাজা একথা শুনে খুবই দুঃখ পেলেন ও মুষড়ে পড়লেন| তিনি দানিয়েলকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন এবং সেই জন্য সূর্য়াস্ত পর্য়ন্ত তিনি দানিয়েলকে রক্ষা করার উপায় ভাবতে লাগলেন| 15 তখন ওই লোকরা রাজার কাছে একত্রে গিয়ে বলল, “মহারাজ মনে রাখবেন মাদীয় ও পারসীকদের নিয়মানুসারে কোন আইন বা আদেশে যদি রাজা স্বাক্ষর করেন তবে তা বাতিল বা পরিবর্তন করা যায় না|” 16 তখন রাজা তাঁর ভৃত্যদের দানিয়েলকে আনতে আদেশ দিলেন এবং তারা তাঁকে আনল| রাজা দানিয়েলকে বললেন, “আমি আশা করি য়ে ঈশ্বরকে তুমি অনবরত উপাসনা করছ তিনি তোমায় রক্ষা করবেন|” 17 একটি বড় পাথর আনা হল এবং গুহামুখে রাখা হল| রাজা ও তাঁর কর্মচারীরা সেই পাথরটি তাদের আংটি দিয়ে সীলমোহর করলেন, যাতে কেউ না পাথর সরাতে পারে এবং দানিয়েলকে গুহা থেকে বের করে আনতে পারে| 18 তারপর রাজা তাঁর প্রাসাদে ফিরে গেলেন| তিনি রাত্রে কিছু খাননি আর কাউকে আসতে দেননি এবং তাঁকে মনোরঞ্জন করতে দেননি| তিনি ঘুমোতেও পারেন নি| 19 পরদিন সকালে আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি গুহার কাছে ছুটে গেলেন| 20 তিনি গুহার কাছে গিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন স্বরে দানিয়েলকে ডাকতে লাগলেন| তিনি বললেন, “হে দানিয়েল, জীবন্ত ঈশ্বরের সেবক, তুমি সব সময় তাঁর সেবা কর| তোমার ঈশ্বর কি তোমাকে সিংহের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছেন?” 21 দানিয়েল উত্তর দিল, “মহারাজ দীর্ঘজীবি হোন! 22 আমার ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করবার জন্য তাঁর দূত পাঠিয়েছেন| দূত সিংহদের মুখগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন| সিংহরা আমাকে আঘাত করেনি কারণ ঈশ্বর জানেন আমি নির্দোষ| আমি কখনো আপনার প্রতি কোন অন্যায় করিনি|” 23 দারিয়াবস এই শুনে খুব খুশী হলেন এবং তাঁর ভৃত্যদের আদেশ দিলেন দানিয়েলকে সিংহের খাঁচা থেকে বের করে আনতে| দানিয়েলকে যখন সিংহের খাঁচা থেকে বের করে আনা হল তখন তাঁর শরীরে কোন ক্ষত পাওয়া গেল না| সিংহরা দানিয়েলের কোন ক্ষতি করেনি কারণ তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিলেন| 24 তখন রাজা দানিয়েলের ওপর দোষারোপ করবার জন্য ঐ লোকগুলোকে সিংহগুলোর গুহার কাছে আনতে আদেশ দিলেন| তিনি তাঁর ভৃত্যদের স্ত্রী ও সন্তানসহ তাদের ওর মধ্যে ফেলে দিতে আদেশ করলেন| তারা গুহার মেঝে স্পর্শ করার আগেই সিংহের মুখে পড়ল| সিংহরা তাদের দেহের মাংস খেয়ে নিল এবং তাদের সমস্ত হাড়গুলোও গুঁড়ো করে ফেলল| 25 তারপর রাজা দারিয়াবস বিভিন্ন দেশসমূহ ও বিভিন্ন ভাষাসমূহের লোকদের কাছে এই চিঠি লিখলেন:“শুভেচ্ছা! 26 আমি একটি নতুন আইন তৈরি করছি| এই আইনটি আমার সমগ্র রাজ্যের লোকদের জন্য তৈরী| তোমরা সবাই দানিয়েলের ঈশ্বরকে ভয় ও ভক্তি করে চলবে|দানিয়েলের ঈশ্বর হলেন জীবন্ত ঈশ্বর| ঈশ্বর চির জীবি! তাঁর রাজত্ব কখনো শেষ হবে না, তাঁর শাসনও শেষ হবে না| 27 ঈশ্বর মানুষকে সাহায্য করেন ও রক্ষা করেন| ঈশ্বর স্বর্গে ও পৃথিবীতে চিহ্ন-কার্য়্য় এবং আশ্চর্য়্য় কার্য়্য় করেন| এই সেই ঈশ্বর যিনি দানিয়েলকে সিংহের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন|” 28 এবং দানিয়েল দারিয়াবস ও পারসীক রাজা কোরসের সময় সফল হয়েছিলেন|
1 বাবিলের রাজা বেল্শত্সরের রাজত্বের প্রথম বছরেদানিয়েল বিছানায় শুয়ে ঘুমোনোর সময় একটি স্বপ্ন দেখলেন| 2 তিনি স্বপ্নে যা দেখে ছিলেন তা লিখে রাখলেন এবং তার সারমর্ম বললেন| তিনি বললেন: “আমি রাত্রে একটি স্বপ্ন দেখেছি| ঐ স্বপ্নে চারি দিক থেকে জোরে হাওয়া বইছিল এবং সমুদ্রকে অশান্ত করে তুলেছিল| 3 আমি চারটি বড় জন্তু দেখেছিলাম যারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের থেকে আলাদা| তারা সবাই সমুদ্র থেকে উঠে এলো| 4 “প্রথম জন্তুটিকে সিংহের মতো দেখতে আর তার ঈগলের মতো ডানা ছিল| আমি যখন তাকিয়ে ছিলাম, তার ডানাগুলি টেনে তুলে ফেলা হল| জন্তুটিকে মাটি থেকে তোলা হল এবং তাকে মানুষের মত দুপায়ের ওপর দাঁড় করানো হল| এবং তাকে একটি মানুষের মন দেওয়া হল| 5 “তারপর আমি দ্বিতীয় জন্তুটিকে দেখতে পেলাম যাকে দেখতে ভালুকের মতো| তাকে তার পেছনের পায়ের ওপর তোলা হল এবং তার মুখের মধ্যে দাঁতের ফাঁকে তিনটি পঞ্জরাস্থি ছিল| তাকে বলা হল, ‘চালিয়ে যাও, তোমার যত ইচ্ছে মাংস খাও!’ 6 “তারপর আমি আমার সামনে আরেকটি জন্তুর দিকে তাকালাম| এটি ছিল একটি চিতা বাঘের মতো দেখতে কিন্তু এর পিঠে চারটি ডানা ছিল| ডানাগুলি ছিল পাখির ডানার মতো এবং জন্তুটির চারটি মাথাও ছিল| একে কর্ত্তৃত্ব করার ক্ষমতা দেওয়া হল| 7 “তারপর, আমি আমার স্বপ্ন দর্শনে চতুর্থ জন্তুটিকে দেখলাম| এই জন্তুটি ছিল বিভীষিকাময়, ভয়ঙ্কর এবং ভীষণ শক্তিশালী| এটির ছিল বড় বড় লোহার দাঁত| এই জন্তুটি তার শিকারকে পিষে ফেলে খেয়ে নিল এবং তার শিকারের যা কিছু অবশিষ্ট ছিল তাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিল| এই চতুর্থ জন্তুটি আমার দেখা সমস্ত জন্তুর চেয়ে আলাদা ছিল| এরও দশটি শিং ছিল| 8 “আমি যখন ঐ শিংগুলিকে কাছ থেকে দেখছিলাম, ঐ শিংগুলির মধ্যে আরেকটি শিং গজিয়ে উঠল| এই শিংটি ছোট ছিল এবং এতে মানুষের চোখ ছিল| এই শিংটির একটি মুখ ছিল, য়েটি দম্ভ প্রকাশ করে যাচ্ছিল| ওই শিংটি আরও তিনটি শিংকে উপড়ে ফেলল| 9 “আমি তাকিয়ে থাকা-কালীন, কয়েকটি সিংহাসন রাখা হল| এক জন প্রাচীন রাজা সিংহাসনে বসলেন| তাঁর পোশাক ছিল তুষার শুভ্র| তাঁর মাথার চুল ছিল মেষ শাবকের পশমের মত সাদা| তাঁর সিংহাসন ছিল আগুনের তৈরী এবং সিংহাসনের চাকাগুলি ছিল অগ্নিশিখা থেকে বানানো| 10 সেই প্রাচীন রাজার সামনে দিয়ে এক আগুনের নদী বয়ে যাচ্ছিল| লক্ষ লক্ষ লোক তাঁকে সেবা করছিল এবং কোটি কোটি লোক তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিল| রাজসভা শুরু হতে যাচ্ছিল এবং বইগুলি খোলা ছিল| 11 “যতক্ষণ আমি লক্ষ্য করছিলাম, ছোট শিংটি দম্ভ প্রকাশ করছিল| আমি দেখতেই থাকলাম যতক্ষণ না ঐ চতুর্থ জন্তুটিকে হত্যা করে তার শরীরকে বিনষ্ট করা হল এবং জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করা হল| 12 অন্য জন্তুদের কাছ থেকেও কর্ত্তৃত্বের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হল| কিন্তু তাদের কিছু সময়ের জন্য বেঁচে থাকার অধিকার দেওয়া হল| 13 “আমি রাত্রে য়ে স্বপ্নদর্শন করলাম তাতে মানুষের মতো দেখতে এক ব্যক্তি আমার সামনে এলেন| তিনি আকাশের মেঘের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসে সেই প্রাচীন রাজার কাছে এলেন এবং তারা তাঁকে তাঁর সামনে নিয়ে এলো| 14 “সেই মানুষের মতো ব্যক্তিটিকে কর্ত্তৃত্ব, মহিমা ও সম্পূর্ণ শাসন ক্ষমতা দেওয়া হল| সমস্ত দেশ ও সমস্ত ভাষার লোকরা তাঁর উপাসনা করবে| তাঁর শাসন ও রাজত্ব চিরস্থায়ী হবে| তা কখনো ধ্বংস হবে না| 15 “আমি, দানিয়েল চিন্তিত ও বিব্রত হয়েছিলাম| এই স্বপ্নদর্শন আমার মনকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল| 16 যারা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল আমি তাদের এক জনের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলাম এসবের অর্থ কি| তাই সে আমাকে এই সব ব্যাখ্যা করে বলল| 17 সে বলল, ‘চারটি মহান জন্তু হল চারটি রাজত্ব| ওই চারটি রাজত্ব পৃথিবীতে আসবে| 18 কিন্তু যারা ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং তাঁর অধিকারভুক্ত, তারা রাজত্ব পাবে এবং ঐ রাজত্ব চির কালের জন্য ভোগ করবে|’ 19 “তখন আমি জানতে চেয়েছিলাম চতুর্থ জন্তুটি কি ও তার অর্থ কি? চতুর্থ জন্তুটি ছিল সমস্ত জন্তুর থেকে ভিন্ন| ওটা ছিল ভয়ঙ্কর| এই জন্তুটির ছিল লোহার দাঁত ও পিতলের নখ| এই জন্তু তার শিকারকে পিষে ফেলে খেয়ে নিত এবং শিকারের অবশিষ্ট ভাগের ওপর দিয়ে মাড়িয়ে চলে য়েত| 20 এবং আমি ঐ চতুর্থ জন্তুটির মাথার দশটি শিং-এর কথা জানতে চেয়েছিলাম| আমি ঐ ছোট শিংটির ব্যাপারে জানতে চেয়ে ছিলাম য়েটি পরে গজিযে উঠেছিল এবং তিনটি শিংকে উপড়ে ফেলেছিল| এই ছোট শিংটির চক্ষুসমূহ ছিল এবং একটি মুখ ছিল য়েটি সারাক্ষণ দম্ভ প্রকাশ করত| এটি অন্যদের চেয়ে ভয়ঙ্কর দেখতে ছিল| 21 আমি যখন দেখেই যাচ্ছিলাম তখন এই ছোট শিংটি ঈশ্বরের বিশেষ লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করছিল এবং তাদের পরাজিত করল| 22 এটা চলতে লাগল যতক্ষণ না প্রাচীন রাজা এলেন এবং ঈশ্বরের বিশেষ লোকদের স্বপক্ষে রায় দিলেন| প্রাচীন রাজার ঘোষিত বিচার তাঁর বিশেষ লোকদের তাদের রাজত্ব পেতে সাহায্য করল| 23 “তিনি আমাকে বুঝিয়ে বললেন: ‘চতুর্থ জন্তুটি হল চতুর্থ রাজ্য যা পৃথিবীতে আসবে| এই রাজ্য অন্য সব রাজ্যের থেকে আলাদা হবে এবং এটি সারা পৃথিবীকে গ্রাস করবে| 24 দশটি শিং হল দশ জন রাজা যারা আসবে| এদের পরে আরেকজন রাজা আসবে য়ে আগেকার রাজাদের থেকে আলাদা হবে| সে অন্য তিন জন রাজাকে পরাস্ত করবে| 25 এই রাজা পরাত্পরের বিরুদ্ধে বলবে এবং ঈশ্বরের বিশেষ লোকদের নির্য়াতন করবে| এই রাজা নিরূপিত সময়ের এবং ব্যবস্থার পরিবর্তনের চেষ্টা করবে| ঈশ্বরের বিশেষ লোকরা ঐ রাজার অধীনে 3 1/2 বছর কাটাবে| 26 “‘কিন্তু স্বর্গের বিচারসভা বিচার করবে এবং তার ক্ষমতা কেড়ে নেবে| তার রাজ্য ধ্বংস করা হবে এবং সেটি চির কালের জন্য শেষ হয়ে যাবে| 27 তারপর ঈশ্বরের বিশেষ লোকরা পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের লোকেদের ওপর কর্ত্তৃত্ব করবে| অন্য সমস্ত রাজ্যের লোকরা এদের সম্মান ও সেবা করবে|’ 28 “এটাই ছিল স্বপ্নদর্শনের ব্যাখ্যার শেষ| আমি, দানিয়েল এত ভীত হয়েছিলাম য়ে ভয়ে আমার মুখ সাদা হয়ে গিয়েছিল| এবং আমি যা দেখেছিলাম ও শুনেছিলাম তা অন্য লোকদের জানাইনি|”
1 বেল্শত্সরের রাজত্বের তৃতীয় বছরে আমার এই স্বপ্নদর্শন হয়েছিল| এটি ছিল আমার প্রথম স্বপ্নদর্শন হবার পরে| 2 এই স্বপ্নে আমি দেখেছিলাম আমি এলম প্রদেশের রাজধানী শূশনে ঊলয় নদীর ধারে দাঁড়িয়ে আছি| 3 আমি ওপরে তাকালাম এবং একটি দুই শিং বিশিষ্ট মেষকে ঊলয় নদীর ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম| তার দুটি শিং লম্বা কিন্তু একটি অপরটির চেয়ে বেশি লম্বা এবং লম্বা শিংটি অন্য শিংটির পরে গজিয়েছিল| 4 আমি দেখলাম মেষটি তার শিংগুলো উঁচু করে পশ্চিমে, উত্তরে এবং দক্ষিণে আক্রমণ করছে এবং কোন জন্তু তাকে থামাতে পারছে না| অন্য জন্তুদের কেউ বাঁচাতেও পারল না| মেষটি তার ইচ্ছামত করতে লাগল এবং ভীষণ শক্তিশালী হয়ে উঠল| 5 আমি যখন এই মেষটির কথা ভাবছিলাম তখন দেখলাম য়ে পশ্চিমদিক থেকে একটি বিরাট শিংযুক্ত পুং ছাগল আসছে| পুং ছাগলটি এত জোরে দৌড়ে এল য়ে তার পা মাটিতে প্রায় ঠেকলই না| 6 সেই পুং ছাগলটি দুই শিংযুক্ত মেষের কাছে এলো যাকে আমি ঊলয় নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম| পুং ছাগলটি তার ভীষণ রাগ নিয়ে মেষের দিকে তেড়ে গেল| 7 যখন পুং ছাগলটি মেষের কাছে পৌঁছল, সে খুব রেগে ছিল| ছাগলটি মেষের শিং দুটি ভেঙে ফেলল| তাকে মেষটি আটকাতে পারল না| তারপর পুং ছাগলটি মেষটিকে গুঁতো মেরে মাটিতে ফেলে দিল এবং তাকে পদদলিত করল| ছাগলের হাত থেকে মেষকে বাঁচাবার মত কেউই ছিল না| 8 তারপর ঐ পুং ছাগলটি আরো বেশী শক্তিশালী হয়ে উঠল| কিন্তু সে যখন সব চেয়ে বেশী শক্তিশালী হয়ে উঠল তার বড় শিংটি ভেঙ্গে গেল এবং তার জায়গায চারটি শিং গজাল| এই চারটি শিংকে সহজেই দেখা য়েত এবং এরা চারটি ভিন্ন দিকে মুখ করে ছিল| 9 এরপর ওই চারটির মধ্যে একটি শিং থেকে একটি ছোট শিং গজাল| এই ছোট শিংটি দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে এবং সুন্দর ভূমির দিকে বেড়ে উঠল| 10 তারপর এই ছোট শিংটি এত বড় হয়ে গেল য়ে স্বর্গের দূতসমূহ পর্য়ন্ত পৌঁছে গেল এবং কয়েক জন দূত ও কয়েকটি তারাকে মাটিতে নামিয়ে আনল এবং তাদের মাড়িয়ে দিলো| 11 সেই ছোট শিংটি ভীষণ শক্তিশালী হয়ে উঠল এবং সে দূতসমূহের অধিপতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেল| সে লোকদের নিত্য নৈবেদ্য থেকে বিরত করল এবং মন্দিরকে ভূপতিত করল| 12 সেই ছোট শিংটি নিত্য নৈবেদ্যর পরিবর্তে পাপ কার্য়্য়ে লিপ্ত হয়েছিল| সে ধর্মকে ভূপতিত করল| সে যা কিছু করেছিল তাতেই সাফল্য লাভ করল| 13 তারপর আমি পবিত্র দূতদের এক জনকে কথা বলতে শুনলাম| তারপর আমি আরেকজন পবিত্র দূতকে প্রথম জনের কথার উত্তর দিতে শুনলাম| প্রথম জন বলল, “কত দিন ধরে এসব জিনিষ চলবে? কতদিন দৈনিক উত্সর্গ করা বন্ধ থাকবে? কতদিন এই ভয়ানক পাপ স্থায়ী হবে? কত দিন ধরে এই মন্দির এবং দূতেরা শ্রদ্ধাহীন ভাবে পদদলিত হবে?” 14 অপর পবিত্র ব্যক্তি বলল, “এই ঘটনা 2,300 দিন ধরে চলবে| তারপর পবিত্র স্থানটি সারানো হবে|” 15 আমি, দানিয়েল এই স্বপ্নদর্শন করেছিলাম এবং তার অর্থ বোঝার চেষ্টা করেছিলাম| যখন আমি এই স্বপ্নদর্শনের কথা ভাবছিলাম তখন একজন মানুষের মতো দেখতে ব্যক্তি এসে আমার সামনে দাঁড়াল| 16 তারপর আমি ঊলয় নদীর ওপর থেকে এক জন মানুষের স্বর শুনলাম| সেই স্বর বলল, “গাব্রিয়েল তুমি এই লোকটিকে স্বপ্নদর্শনের অর্থ ব্যাখ্যা করে দাও|” 17 তাই মানুষের মতো দেখতে সেই দূত গাব্রিয়েল আমার কাছে এল| আমি ভয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম| কিন্তু গাব্রিয়েল আমাকে বলল, “হে মানুষ, বুঝে নাও এই স্বপ্নদর্শন যা হল শেষ সময়ের সম্বন্ধে|” 18 যখন গাব্রিয়েল কথা বলতে শুরু করল তখন আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম এবং মাটির ওপর মুখ খুবড়ে পড়ে গেলাম| কিন্তু সেই গভীর ঘুম থেকে গাব্রিযেল আমাকে টেনে তুলে নিজের পায়ে দাঁড় করাল| 19 গাব্রিয়েল বলল, “এখন আমি তোমাকে স্বপ্নদর্শনটি ব্যাখ্যা করব| ঈশ্বরের ক্রোধর শেষ সময়ে কি হবে তা আমি তোমাকে বলব| একটি নির্দিষ্ট সময় সমাপ্তি আসবে| 20 “তুমি দুটি শিং বিশিষ্ট একটি মেষ দেখেছো| ওই শিং দুটি হল মাদীয় ও পারসীক দেশের রাজ্যদ্বয়| 21 ছাগলটি হল গ্রীস দেশের রাজা এবং তার চোখের মাঝখানের বড় শিংটি হল প্রথম রাজা| 22 সেই শিংটি ভেঙে তার জায়গায় আরো চারটি শিং গজাল| ঐ চারটি শিং হল চারটি রাজ্য যা প্রথম রাজার দেশ থেকে আসবে| কিন্তু ঐ চারটি দেশ প্রথম দেশটির মতো শক্তিশালী হবে না| 23 “ওই রাজ্যগুলির শেষ সময় এক জন কঠোর ও নির্দয রাজা আসবে য়ে হবে ভীষণ ধূর্ত| এটা ঘটবে যখন ওখানে অনেক অনেক পাপী লোক হবে| 24 ঐ রাজা ভীষণ ক্ষমতাবান হবে কিন্তু এই ক্ষমতা তার নিজের থেকে হয় নি| এই রাজা ভয়ঙ্কর ধ্বংস ঘটাবে| সে যা করবে তাই সফল হবে| সে শক্তিমান লোকদের, এমনকি ঈশ্বরের বিশেষ লোকদেরও ধ্বংস করবে| 25 “এই রাজা হবে ভীষণ চতুর ও ধূর্ত| সে তার মিথ্যাগুলো লোককে বিশ্বাস করাবে| সে নিজেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করবে| সে হঠাত্ লোকদের ধ্বংস করবে| সে এমনকি রাজার রাজাকে যুদ্ধে লিপ্ত করতে চাইবে| কিন্তু কোন মানুষের দ্বারা সেই নিষ্ঠুর রাজার ক্ষমতা ধ্বংস করা হবে না| 26 “আমি সেই সময় কি ঘটবে তা নিয়ে স্বপ্নদর্শনের য়ে ব্যাখ্যা দিলাম তা সত্য| কিন্তু এই স্বপ্নদর্শনের ওপর সীলমোহর করে দাও| এইগুলি ঘটবার আগে অনেক কাল কেটে যাবে|” 27 আমি, দানিয়েল এই স্বপ্নদর্শন করার পর ভীষণ দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়লাম| তারপর আমি সেরে উঠে আবার রাজকার্য়্য়ে য়োগ দিলাম| কিন্তু আমি ওই স্বপ্নদর্শনের ব্যাপারে খুব বিভ্রান্ত ছিলাম| আমি ঐ স্বপ্নদর্শনের অর্থ বুঝতে পারিনি|
1 বাবিলের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের প্রথম বছরে এই ঘটনাগুলি ঘটেছিল| দারিয়াবস ছিলেন মাদীয় বংশজাত| দারিয়াবস ছিলেন অহশ্বেরশের পুত্র| 2 তাঁর রাজত্বের প্রথম বছরে আমি, দানিয়েল কয়েকটি বই পড়েছিলাম| আমি বই পড়ে জানতে পেরেছিলাম য়ে প্রভু যিরমিয়কে বলেছিলেন 70 বছর পর আবার জেরুশালেম পুননির্মাণ হবে| 3 তখন আমি ঈশ্বর, আমার প্রভুর কাছে সাহায্য এবং করুণার জন্য প্রার্থনা করেছিলাম| প্রার্থনার সময় আমি উপোস করে, শোক পোশাক পরে এবং মাথায় ছাই মেখে বসেছিলাম| 4 আমি আমার ঈশ্বর, প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে সমস্ত পাপ স্বীকার করে বলেছিলাম, “প্রভু, তুমিই সেই মহান ঈশ্বর| তুমি যাদের ভালোবাসো এবং যারা তোমার আদেশ পালন করে তাদের সঙ্গে তোমার করুণা ও চুক্তি অব্যাহত রাখো|” 5 “কিন্তু প্রভু, আমরা পাপ করেছি, অনেক খারাপ কাজ করেছি| আমরা তোমার বিরুদ্ধাচরণ করেছি| আমরা তোমার আজ্ঞা এবং সঠিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছি| 6 আমরা ভাব্বাদীদের কথা শুনিনি| আমরা কেউই তোমার সেবক, ভাব্বাদীদের কথা শুনিনি| তারা তোমার হয়ে কথা বলে| তারা আমাদের রাজাদের সঙ্গে, নেতাদের সঙ্গে এবং পিতামহদের সঙ্গে কথা বলেছিল| তারা ইস্রায়েলের সমস্ত লোকের সঙ্গে কথা বলেছিল| কিন্তু আমরা ঐ ভাব্বাদীদের কথা বিন্দুমাত্র শুনিনি| 7 “প্রভু, তুমিই ঠিক এবং ধার্মিকতা তোমারই! আমাদের যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের লজ্জা হওয়া উচিত্| আমাদের, ইস্রায়েলের লোকদের যাদের তুমি কাছের এবং দূরের দেশগুলিতে ছড়িয়ে দিয়েছ, তাদের লজ্জা হওয়া উচিত্| কেন? কারণ আমরা তোমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলাম| 8 “প্রভু তোমার বিরুদ্ধে পাপাচারে মেতে ওঠার জন্য আমাদের প্রত্যেকের লজ্জিত হওয়া উচিত্| আমাদের রাজাদের, নেতাদের এবং পূর্বপুরুষদের লজ্জিত হওয়া উচিত্| 9 “কিন্তু প্রভু, তুমি সত্যিই দয়ালু| তুমি লোকদের খারাপ কাজ ক্ষমা কর| এবং আমরা সত্যিই তোমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলাম| 10 আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে অমান্য করেছি| প্রভুর অনুগামীসমূহ, ভাব্বাদীদের মাধ্যমে আমাদের জন্য যা বিধি করেছিলেন তা আমরা কেউই মেনে চলিনি| আমরা প্রভুর নিয়ম এবং বিধিকে অমান্য করেছিলাম| 11 ইস্রায়েলের এক জন মানুষও তোমার শিক্ষাকে মান্য করেনি| তারা প্রত্যেকে তোমাকে অমান্য করে তোমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল| প্রভুকে অমান্য করার শাস্তির বিধান সমস্ত লিখিত প্রতিশ্রুতি মোশির বিধিপুস্তকে (মোশি ঈশ্বরের দাস) লেখা ছিল| আইনকে অমান্য করার ফল আমরা ভুগছি| প্রভুর বিরুদ্ধে করা সমস্ত পাপাচারের শাস্তি অভিশাপ হিসেবে আমাদের জীবনে বর্ষিত হয়েছে| 12 “প্রভু আমাদের ও আমাদের নেতাদের জীবনে যা যা ঘটাবার কথা বলেছিলেন তাই তিনি ঘটিযেছেন| তিনি আমাদের ওপর ভয়ঙ্কর অমঙ্গল এনেছেন| জেরুশালেমের মতো দুরবস্থা আর কোন শহরের হয় নি| 13 মোশির বিধি পুস্তকে য়েমনটি লেখা আছে তেমনি সমস্ত অমঙ্গল আমাদের জীবনে ঘটে গিয়েছে| কিন্তু তবু আমরা প্রভুকে সাহায্য করার জন্য প্রার্থনা করিনি| তবু আমরা পাপাচার থেকে নিজেদের সরিয়ে নিইনি| তবু আমরা প্রভুর সততার দিকে মন দিইনি| 14 প্রভু আমাদের জন্য সমস্ত অমঙ্গল তৈরী করে রেখেছিলেন| এবং সেইগুলিই আমাদের জীবনে ঘটিয়েছেন| প্রভু সঠিক কাজটাই করেছিলেন কিন্তু আমরা তবুও তাঁর কথা শুনিনি| 15 “প্রভু, আমাদের ঈশ্বর তুমি তোমার ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছো| আমরা তোমার লোক| তুমি আজও সেই জন্য বিখ্যাত| প্রভু, আমরা পাপ করেছি এবং কুকর্ম করেছি| 16 প্রভু, তোমার পবিত্র পর্বতের ওপর অবস্থিত তোমার পবিত্র শহর জেরুশালেমের প্রতি তোমার ক্রোধ নিবৃত্ত হোক| জেরুশালেমের ওপর ক্রোধ থেকে বিরত হও কারণ তুমি দয়ালু এবং উদার| আমরা এবং আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছিলাম বলে, আমাদের চার পাশের লোকরা তোমার লোকেদের নিয়ে উপহাস করে| 17 “প্রভু তোমার দাসের প্রার্থনা শোন| সাহায্যের জন্য আমার প্রার্থনা শোন| তোমার নিজের জন্য তোমার পবিত্র মন্দিরটির দিকে, য়েটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে, অনুগ্রহের দৃষ্টি দাও| 18 আমার ঈশ্বর, আমার কথা শোন! চোখ খুলে দেখ আমাদের জীবনে কি কি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে! দেখো তোমার নামাঙ্কিত শহরের কি দুরাবস্থা! আমি বলছি না য়ে আমরা ভাল মানুষ| সে জন্য আমি তোমাকে এ কথাগুলি বলছি না| আমি তোমাকে এ কথাগুলো বলছি কারণ আমি জানি তুমি দয়ালু| 19 প্রভু, আমাদের কথা শোন! প্রভু আমাদের ক্ষমা করো! প্রভু আমার কথা শোন! তোমার নিজের জন্য, আর দেরী করো না কারণ তোমার লোকরা আর তোমার শহর তোমার নামে পরিচিত|” 20 এই ভাবে আমি ঈশ্বরকে আমার প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে ওই কথাগুলি বলছিলাম| আমি আমার পাপসমূহ এবং ইস্রায়েলের লোকদের পাপসমূহ স্বীকার করছি| আমি ঈশ্বরের পবিত্র পর্বতের জন্য প্রার্থনা করছিলাম| 21 আমার প্রার্থনা কালে গাব্রিযেল নামে এক ব্যক্তি এসে উপস্থিত হয়েছিল| এ ছিল সেই গাব্রিয়েল যাকে পূর্বে আমি আমার স্বপ্নদর্শনে দেখেছিলাম| গাব্রিয়েল য়েন হাওয়ায় উড়ে এসেছিল| সন্ধ্যা-কালীন নৈবেদ্যর সময় সে এসেছিল| 22 সে আমার সঙ্গে কথা বলল এবং আমি যাতে বুঝতে পারি সেই রকম ভাবে সাহায্য করল| গাব্রিয়েল বলল, “দানিয়েল, আমি তোমাকে বেশী জ্ঞান দিতে এসেছি| 23 তুমি যখন প্রথম প্রার্থনা করতে শুরু করেছিলে তখন ঈশ্বর আমাকে আজ্ঞা দিয়েছিলেন তোমাকে শেখাবার জন্য| তাই আমি তোমাকে জানাতে এসেছি কারণ ঈশ্বর তোমাকে খুব ভালবাসেন! তুমি এই আজ্ঞা বুঝবে, তারপর তুমি স্বপ্নদর্শনও বুঝতে পারবে| 24 “ঈশ্বর তোমার জাতি এবং তোমার পবিত্র শহরের জন্য 70 সপ্তাহ নির্ধারণ করেছেন| এই বিষয়গুলির জন্য 70 সপ্তাহ সময়ের আদেশ দেওয়া হয়েছে: সমস্ত খারাপ কাজ বন্ধ করবার জন্য, পাপ কাজ বন্ধ করবার জন্য, লোকদের শুদ্ধ করবার জন্য, ধার্মিকতাকে আনবার জন্য য়েটা চিরকালের জন্য অব্যাহত থাকবে, স্বপ্নদর্শন ও ভাব্বাদীদের ওপর শীলমোহর করা এবং খুব পবিত্র স্থানটি উত্সর্গ করা| 25 “দানিয়েল এই বিষয়গুলি বুঝে নাও, জেনে নাও| জেরুশালেমকে পুননির্মাণ করার জন্য একটা বার্তা আসবে| ঐ বার্তাটি আসার সাত সপ্তাহ পরে এক জন নেতা নির্বাচন করা হবে| তারপর জেরুশালেম পুননির্মিত হবে| জেরুশালেমে আবার একটি উন্মুক্ত বর্গক্ষেত্র থাকবে এবং শহরের সুরক্ষার জন্য তার চারি দিকে একটি পরিখা থাকবে| 62 সপ্তাহের মধ্যে জেরুশালেম পুনরায তৈরী হবে| কিন্তু ওই সময় অনেক সঙ্কটের মুখে পড়তে হবে| 26 বাষট্টি সপ্তাহের পর নির্বাচিত ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে এবং তাঁর কিছুই থাকবে না| তারপর ভবিষ্যত্ নেতার লোকরা শহরটি এবং তার পবিত্র স্থান ধ্বংস করে দেবে| সমাপ্তি আসবে বন্যার মতো| সব শেষ না হওয়া পর্য়ন্ত যুদ্ধ চলবে| এই স্থানটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| 27 “তখন ভবিষ্যতের শাসক অনেক লোকের সঙ্গে একটি চুক্তি করবে| ঐ চুক্তিটি এক সপ্তাহ পর্য়ন্ত অব্যাহত থাকবে| অর্ধেক সপ্তাহের জন্য উত্সর্গ এবং নৈবেদ্যসমূহ বন্ধ হবে| এবং এক জন ধ্বংসকারী আসবে| কিন্তু ঈশ্বর আদেশ দিয়েছেন সে ভয়ঙ্কর ধ্বংসের কাজ করবে| য়ে ধ্বংসকারীটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হবে|”
1 পারস্যের রাজা ছিলেন কোরস| রাজা কোরসের রাজত্বের তৃতীয় বছরে দানিয়েল ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি বার্তা পান| (দানিয়েলের অপর নাম হল বেলটশত্সর|) এই বার্তাটি খুবই সত্য| দানিয়েল বার্তাটি বুঝতে খুব কষ্ট করলেন এবং অবশেষে তিনি দর্শনটি বুঝতে পারলেন| 2 দানিয়েল বললেন, “বার্তাটি যখন আমার কাছে এলো, তখন আমি তিন সপ্তাহের জন্য য়ে ব্যক্তির বন্ধু অথবা পরিবার মারা গেছে, তার মত শোক করছিলাম| 3 ঐ তিন সপ্তাহ কালের মধ্যে আমি কোন সুস্বাদু খাবার খাইনি, মাংস ভোজন করিনি, দ্রাক্ষারস পান করিনি, মাথায় তেল মাখিনি| 4 “প্রথম মাসের 24তম দিনে আমি হিদ্দেকল মহানদীর তীরে দাঁড়িয়েছিলাম| 5 সেখানে দাঁড়ানোর সময় চোখ মেলে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলাম ক্ষৌমবস্ত্র পরিহিত এবং কোমরে খাঁটি সোনার কোমর বন্ধনী পরিহিত একজন ব্যক্তি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে| 6 তার শরীর ছিল মসৃণ ও উজ্জ্বল পাথরের মতো| তার মুখমণ্ডল ছিল বিদ্যুত্প্রভার মত| তার দুটি চোখই ছিল আগুনের জ্বলন্ত শিখা| তার বাহুদ্বয এবং পদযুগল ছিল উজ্জ্বল পিতলের মতো| তার স্বর ছিল য়েন হাজার লোকের মিলিত কোলাহল| 7 “আমি, দানিয়েল, একমাত্র ব্যক্তি য়ে ঐ স্বপ্নদর্শন দেখতে পেয়েছিলাম| আমার সঙ্গীরা সেই স্বপ্নদর্শন থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, কিন্তু তারা ভীত হয়েছিল| তারা ভয় পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়েছিল| 8 তাই আমি একাই ঐ স্বপ্নদর্শন করেছিলাম| আমি আমার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলাম| আমার মুখ মৃত মানুষের মুখের মত সাদা হয়ে গিয়েছিল এবং আমি অসহায় হয়ে পড়েছিলাম| 9 তখন আমি শুনতে পেলাম য়ে ঐ ব্যক্তিটি স্বপ্নদর্শনের মাধ্যমে কথা বলছে| আমি তার স্বর শোনার পরেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়ে মাটিতে লুটিযে পড়েছিলাম| 10 “তখন একটি হাত আমাকে স্পর্শ করেছিল| এটা যখন ঘটল তখন আমি আমার হাত এবং হাঁটুর ওপরে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম| আমি এত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম য়ে আমি ভয়ে কাঁপছিলাম| 11 স্বপ্নদর্শনে মানুষটি আমাকে বলে উঠলেন, ‘দানিয়েল, তোমাকে ঈশ্বর খুব ভালবাসেন| য়ে কথাগুলি আমি তোমাকে বলব সেগুলি নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করবে এবং বুঝে নেবে| উঠে দাঁড়াও, আমাকে এই জন্যই তোমার কাছে পাঠানো হয়েছে|’ এবং যখন সে এই কথাগুলি বললেন, আমি উঠে দাঁড়ালাম| যদিও তখন আমি ভয়ে কাঁপছিলাম| 12 তখন সেই লোকটি স্বপ্নদর্শনের মধ্যে দিয়ে আবার কথা বলতে শুরু করলেন| তিনি আমাকে বললেন, ‘দানিয়েল, ভয় পেও না| একেবারে প্রথম থেকেই যখন তুমি বুঝতে চেষ্টা করেছিলে এবং ঈশ্বরের সামনে নিজেকে বিনয়ী করেছিলে, ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা শুনেছিলেন| তা সত্ত্বেও, তোমার প্রার্থনার সাড়া দিয়ে আমি আসতে শুরু করেছিলাম| 13 কিন্তু পারস্যের যুবরাজ 21 দিন ধরে আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল| সে আমাকে তোমার কাছে আসা থেকে বিরত করেছিল| তখন মীখায়েল নামের একজন গুরুত্বপূর্ণ যুবরাজ আমাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলো| কারণ আমি সেখানে একা পারস্যরাজের দ্বারা আটকে পড়েছিলাম| 14 দেখ দানিয়েল, তোমার লোকদের ভবিষ্যতে কি হবে সেটা ব্যাখ্যা করবার জন্য আমি এসেছি| এই স্বপ্নদর্শন ভবিষ্যতের একটি সময়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত|’ 15 “ঐ লোকটি আমার সঙ্গে কথা বলার সময় আমি আভূমি নত হয়েছিলাম| আমি কোন কথা বলতে পারছিলাম না| 16 তখন মানুষের মত দেখতে সেই এক জন আমার ওষ্ঠ স্পর্শ করলেন এবং আমি আবার কথা বলতে সক্ষম হলাম| আমি আমার সামনে দাঁড়ানো সেই এক জনের সঙ্গে কথা বললাম, ‘মহাশয়, আমি স্বপ্নদর্শনে যা দেখেছি তা নিয়ে খুব অস্থির এবং চিন্তিত| আমি অসহায় বোধ করছি| 17 মহাশয়, আমি দানিয়েল, আপনার ভৃত্য| আমার প্রভু, আমার মত এক জন বিনীত লোক আপনার সঙ্গে কি করে কথা বলতে পারে? আমার সমস্ত শক্তি নিঃশেষিত এবং আমার পক্ষে নিঃশ্বাস নেওয়াটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে|’ 18 “তখন মানুষের আকৃতি বিশিষ্ট সেই ব্যক্তি আমাকে পুনরায় স্পর্শ করলেন এবং আমি আগের থেকে ভাল অনুভব করতে থাকলাম| 19 তখন তিনি বললেন, ‘দানিয়েল ভয় পেও না| ঈশ্বর তোমাকে অত্যন্ত ভালবাসেন| তোমার কোন ক্ষতি হবে না| এখন শক্তিশালী হয়ে ওঠো|’“যখন তিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন আমি সবল হয়ে উঠছিলাম| আমি বললাম, ‘মহাশয়, আপনি আমায সবল করে তুললেন| এখন আপনি কথা বলতে পারেন|’ 20 “তখন তিনি বললেন, ‘দানিয়েল, তুমি কি জানো কেন আমি তোমার কাছে এসেছি? খুব শীঘ্রই আমি পারস্যের যুবরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ফিরে যাব| যখন আমি যাব তখন যবনের যুবরাজ আসবে| 21 কিন্তু দানিয়েল, আমি যাবার আগে, আমাকে বিশদভাবে বলে য়েতে হবে সত্য-গ্রন্থে কি লেখা আছে| ঐ সব দুষ্ট যুবরাজদের বিরুদ্ধে, এক মীখায়েল ছাড়া আর কেউই আমাকে সাহায্য করেনি| মীখায়েল হচ্ছে তোমার লোকদের ওপর শাসন কর্তা সেই যুবরাজ|
1 মাদীয় রাজা দারিয়াবসের রাজত্ব কালের প্রথম বছরেই পারস্যের যুবরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি মীখায়েলের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম| 2 “‘এখন তাহলে দানিয়েল তোমাকে আমি সত্যটি বলব| পারস্যে আরও তিন জন রাজা শাসন করবে| এরপর আসবে চতুর্থ রাজা| সেই চতুর্থ রাজাই হবে পারস্যের সব থেকে ধনী রাজা| খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠার জন্য সে তার ধনসম্পদ ব্যবহার করবে| এবং গ্রীস রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য সে সকলকে ইচ্ছুক করে তুলবে| 3 তখন এক জন শক্তিশালী ও বিত্তবান রাজার আবির্ভাব ঘটবে| সে আরো শক্তি দিয়ে শাসন করবে| সে যা চাইবে তাই করতে সক্ষম হবে| 4 সেই রাজার আবির্ভাবের পর তার রাজ্য চার ভাগে বিভক্ত হবে| তার ছেলেমেয়েরা ও নাতিনাতনিরা তার রাজত্বের ভাগ পাবে না এবং তার রাজ্যগুলি তাদের পুরোনো শক্তি ফিরে পাবে না| কারণ তার রাজ্যের অংশীদার হয়ে উঠবে অন্য মানুষেরা| 5 “‘দক্ষিণ দেশের রাজা বলবান হয়ে উঠবে| কিন্তু তারই এক জন অধ্যক্ষের হাতে তার পরাজয় ঘটবে| তখন সেই অধ্যক্ষই শাসন করতে শুরু করবে| তার রাজ্য হবে একটি খুব শক্তিশালী রাজ্য| 6 “‘কিন্তু কয়েক বছর পরে তাদের দুজনের মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হবে| চুক্তিটি প্রতিপন্ন করবার জন্য দক্ষিণ দেশের রাজার কন্যা যাবে উত্তর দেশের রাজপুত্রকে বিয়ে করতে| ঘটনাবশতঃ তাকে এবং তার ভৃত্যবর্গ যারা তাকে এনেছিল, তার সন্তান এবং সেই এক জন য়ে তাকে সাহায্য করেছিল তাদের সবাইকে প্রতারণা করা হবে| 7 “‘কিন্তু ঐ যুবরাণীর পরিবারের এক ব্যক্তি এসে দক্ষিণের রাজার স্থান গ্রহণ করবে| ঐ ব্যক্তি উত্তরের রাজার সৈন্যবাহিনীকে আক্রমণ করবে| সে উত্তরের রাজার দুর্গে প্রবেশ করে যুদ্ধে জয়লাভ করবে| 8 সে তাদের দেবতার মূর্ত্তি নিয়ে যাবে| এরপর সে আর উত্তরের রাজাকে উত্যক্ত করবে না| 9 উত্তরের রাজা আবার দক্ষিণের রাজধানী আক্রমণ করবে কিন্তু পরাজিত হয়ে পুনরায় নিজের রাজ্যে ফিরে যাবে| 10 উত্তরের রাজার পুত্ররা এবার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে| তারা একটি বিশাল সেনাবাহিনী সংগঠিত করবে| সেই সেনাবাহিনী বন্যার মতো দ্রুত পথ পরিক্রম করবে| তারা দক্ষিণের রাজার দুর্গ আক্রমণ করবে| 11 তখন দক্ষিণের রাজা রুদ্ধ হয়ে উত্তরের রাজাকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে বের হবে| উত্তরের রাজার বিশাল সেনাবাহিনী থাকবে, কিন্তু সে দক্ষিণের রাজার সৈন্যবাহিনী দ্বারা পরাজিত হবে| 12 বিরাট সৈন্যবাহিনীকে পরাজিত করবার পর দক্ষিণের রাজা গর্বিত হবেন এবং তিনি লক্ষ লক্ষ সৈন্য হত্যা করবেন, কিন্তু তিনি ক্ষমতাশালী থাকবেন না| 13 কারণ এরপর উত্তরের রাজা আবার আগের চেয়েও আরও বিশাল সেনাবাহিনী প্রস্তুত করবে| কয়েক বছর পর আবার সে তার বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে আক্রমণ করবে| এই সৈন্যবাহিনী হবে অজস্র অস্ত্রধারী| তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকবে| 14 “‘সেই সময় অনেক লোক দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করবে| তোমার নিজেরই কয়েক জন লোক যারা যুদ্ধ করতে ভালবাসে তারা য়োগ দেবে এবং দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে| তারা স্বপ্নদর্শনকে সত্য করে তুলতে চেষ্টা করবে, কিন্তু তারা যুদ্ধে জয়লাভ করবে না| 15 এরপর উত্তরের রাজা আসবে এবং একটি শক্তিশালী শহর অধিগ্রহণ করে নেবে| দক্ষিণের সৈন্যরা যুদ্ধে পুরোপুরি পরাস্ত হয়ে পড়বে| এমনকি দক্ষিণের বীর সৈন্যরাও তাদের শক্তি দিয়ে উত্তরের সৈন্যদের ঠেকাতে পারবে না| 16 “‘উত্তরের রাজা যা খুশী তাই করতে পারবে| কেউ তাকে থামাতে সক্ষম হবে না| তার হাতে সুন্দর দেশটির ক্ষমতা থাকবে| এবং এই দেশ ধ্বংস করার মতো যথেষ্ট শক্তি তার হাতে থাকবে| 17 উত্তরের রাজা দক্ষিণের রাজাকে পরাজিত করবার জন্য তার রাজ্যের সমগ্র শক্তিকে আনতে স্থির করেছিল| দক্ষিণের রাজার সঙ্গে সে একটি চুক্তি করবে| এবং সেটা প্রতিপন্ন করতে তার এক কন্যাকে দক্ষিণের রাজার সঙ্গে বিয়ে দেবে| কিন্তু এই পরিকল্পনা কার্য়্য়কারী হবে না| 18 “‘এরপর উত্তরের রাজা সমুদ্র উপকুলবর্তী দেশগুলোর দিকে মনোয়োগ দেবে| যুদ্ধে বেরিয়ে সে বেশ কিছু শহর জয় করবে| কিন্তু এরপর এক জন সেনাধ্যক্ষ উত্তরের রাজার সমস্ত গর্ব চূর্ণ করে দেবে| সেই সেনাধ্যক্ষ উত্তরের রাজাকে লজ্জিত করে তুলবে| 19 “‘সেটি ঘটবার পর, উত্তরের রাজা পুনরায় তার নিজের দেশের দুর্গে ফিরে যাবে| কিন্তু সে দুর্বিপাকে পড়বে এবং মারা যাবে| 20 “‘উত্তরের রাজার অপসারণের পর তার স্থানে এক নতুন শাসক উঠে আসবে| ঐ শাসক তার প্রজাগণের কাছ থেকে কর সংগ্রহের জন্য তার সহকারীদের পাঠাবে| কিন্তু কয়েক বছর পরেই সেই শাসক ধ্বংস হবে| তবে সে যুদ্ধে মারা যাবে না| 21 “‘সেই শাসকের পর, আর এক জন নতুন শাসক হবে| ঐ শাসক হবে অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং হীণমন্য ব্যক্তি| ঐ ব্যক্তি রাজকীয পরিবারের সম্মান পাবে না| সে চাটুকারিতার কৌশল অবলম্বন করে শাসক হয়ে যাবে| সে এমন একটা সময় শাসক হবে যখন সেখানে শান্তি আছে| 22 সে বিশাল সৈন্যবাহিনীকে, এমনকি চুক্তির নেতাকেও পরাজিত করবে| 23 অনেক দেশ সেই নিষ্ঠুর এবং ঘৃণ্য ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত করবে| কিন্তু তাদের সাথেও সে চাতুরী করবে| মিথ্য়ে বলে তাদের প্রতারিত করবে| সে শক্তি সঞ্চয় করবে কিন্তু সামান্য কিছু মানুষ তাকে সমর্থন করবে| 24 “‘সেই শান্তির সময়, সে ধনী দেশগুলিতে আসবে| তার পূর্বপুরুষরা যা করেননি এমন সব জিনিষ সে করবে| সে ধনী দেশগুলির শাসকদের বহু উপহার এবং মূল্যবান জিনিষ দেবে| সে তাদের দুর্গগুলি পরাজিত করবার পরিকল্পনা করবে| পরাজিত রাষ্ট্রগুলি থেকে সে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে এসে তার অনুগামীদের হাতে সেগুলি তুলে দেবে| দুর্ভেদ্য ও কঠিন শহরগুলিকেও পরাজিত করার পরিকল্পনা করবে ঐ শাসক| কিছু সময়ের জন্য সে সফল হবে| 25 “‘সেই অতি নিষ্ঠুর এবং ঘৃণ্য শাসকের বিশাল সেনাবাহিনী থাকবে| সে তার শক্তি দেখানোর জন্য ঐ সেনাবাহিনী নিয়ে দক্ষিণের রাজাকে আক্রমণ করবে| দক্ষিণের রাজাও এক বিশাল সেনাবাহিনী সংগঠিত করে যুদ্ধে ঝাঁপিযে পড়বে| কিন্তু রাজার বিরুদ্ধে থাকা কয়েক জনের গোপন পরিকল্পনায দক্ষিণের সেই যুদ্ধে রাজা পরাজিত হবে| 26 দক্ষিণের রাজার বন্ধুবেশী শএুরাই ষড়যন্ত্র করে তাকে যুদ্ধে পরাজিত করবে| দক্ষিণের রাজার অধিকাংশ সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যাবে| 27 উভয় রাজাই পরস্পরের ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে| এক টেবিলে বসেও দুজন দুজনকে মিথ্যে কথা বলবে| কিন্তু তাদের মিথ্য়াগুলি তাদের কোন কাজেই আসবে না| কিন্তু ঈশ্বর ইতিমধ্যে তাদের অপসারণের সময় ঠিক করে রেখেছেন| 28 উত্তরের রাজা অনেক ধনসম্পদ নিয়ে নিজের দেশে ফিরে যাবে| তখন সে, যারা পবিত্র চুক্তি মানে তাদের ক্ষতি করার পরিকল্পনা করবে এবং নিজের দেশে ফিরে যাবে| 29 “‘সঠিক সময় উত্তরের রাজা পুনরায় দক্ষিণের রাজাকে আক্রমণ করবে| কিন্তু এইবার সে আগের বারের মতো সাফল্য পাবে না| 30 পশ্চিম থেকে সমস্ত যুদ্ধ জাহাজগুলি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য ছুটে আসবে| সে পবিত্র চুক্তির বিরুদ্ধে ক্রোধ দেখাবে এবং যারা পবিত্র চুক্তি মানা বন্ধ করেছে তাদের সাহায্য করবে| 31 উত্তরের রাজা জেরুশালেমের মন্দির নষ্ট করতে তার সৈন্যবাহিনীকে পাঠাবে| মন্দিরে নিত্য নৈবেদ্য দিতে আসা লোকেদের সেনারা থামিয়ে দেবে| তারা মন্দিরের ভেতরে সেই ভয়ঙ্কর জিনিষটি রাখবে, য়েটি ধ্বংসের কারণ| 32 “‘উত্তরের রাজা ইহুদীদের দেখতে পাবেন যারা পবিত্র চুক্তির বিরোধী| তিনি তাঁর ভান, ছল-চাতুরী এবং অবিরাম মিথ্য়া দ্বারা তাদের সমর্থন পাবেন| কিন্তু য়ে সকল ইহুদীরা তাদের ঈশ্বরকেই শক্তিমান বলে বিশ্বাস করবেন তারাই শক্তিশালী হয়ে উঠে পুনরায় যুদ্ধ করতে সক্ষম হয়ে উঠবে| 33 “‘ঐ সকল জ্ঞানী শিক্ষক অন্যদের কি ঘটছে তা বোঝাতে সাহায্য করবে| কিন্তু এই ধর্মবিশ্বাসের জন্য তাদের নির্য়াতন সহ্য করতে হবে| তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে তরবারির আঘাতে হত্যা করা হবে| কয়েক জনকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হবে এবং আরো কয়েক জনকে কারাগারে বন্দী করা হবে| তাদের মধ্যে কয়েক জনের ঘরবাড়ি লুঠ করা হবে| 34 যখন সাধারণ লোক হোঁচট খায় তখন জ্ঞানী শিক্ষকরা অল্প সাহায্য করতে এগিয়ে আসে| কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েক জন, যারা তাদের সঙ্গে য়োগ দেবে তারা হবে কপটাচারী| 35 কয়েক জন জ্ঞানী মানুষ হোঁচট খাবে এবং ভুল করবে| তারা শাস্তি পাবে, কিন্তু এটা তাদের ভালো লোক করে দেবে| কারণ যাতে তারা শেষ সময়ে নিজেদের খাঁটি, শক্তিশালী এবং ত্রুটিহীন করে গড়ে তুলতে পারে| তখন, সঠিক সময়, সেই সময়ের সমাপ্তি আসবে|”‘ 36 “‘উত্তরের রাজা যা চায় তাই করতে পারবে| সে নিজেই নিজের কাজের বড়াই করে বেড়ায়| সে নিজের প্রশংসায় নিজে এতোই অন্ধ য়ে নিজেকে সে ঈশ্বরের থেকেও বড় মনে করে| সে যা বলে তা আর কেউ কোনদিন শোনেনি| সে ঈশ্বর সম্পর্কে যা তা বলে বেড়ায়| যতক্ষণ পর্য়ন্ত না ঈশ্বর স্থির করবেন য়ে এই ভয়ানক সময় শেষ হবে, উত্তরের রাজা এ ব্যাপারে সফল হবেন| কারণ কি ঘটতে যাচ্ছে তা ঈশ্বর পূর্বেই পরিকল্পনা করে রেখেছেন| 37 “‘উত্তরের রাজা তার পূর্বপুরুষদের দেবতাদেরও মানবে না| স্ত্রীলোকদের কামনার দেবতার মূর্ত্তিকেও সে মানবে না| সে কোন দেবতাকেই গুরুত্ব দেবে না| সে শুধু নিজের গুণগান গেয়ে বেড়াবে আর নিজেকে সমস্ত দেবতাদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে| 38 উত্তরের রাজা দুর্গগুলির দেবতা ব্যতীত আর কোন ঈশ্বরের উপাসনা করবে না| কিন্তু উত্তরের রাজা দুর্গসমূহের দেবতাদের উপহারস্বরূপ সোনা, রূপা এবং মণিমানিক্য দেবে এবং তাঁকে সম্মান জানাবে| এই দেবতা তার পূর্বপুরুষদের অজ্ঞাত ছিল| 39 “‘উত্তরের রাজা ঐ অজ্ঞাত বিদেশী দেবতার সাহায্য নিয়ে দৃঢ় দুর্গগুলিকে আক্রমণ করবে| অন্যান্য দেশের শাসকগণ তার সাথে য়োগ দিলে সে তাদের সম্মানিত করবে| সে তার অনেক প্রজাকে ঐ সকল শাসকদের সেবায় নিযোজিত করবে| শাসকদের পারিতোষিক হিসেবে অনেক জমিজমা দিয়ে দেবে| 40 “‘অবশেষে দক্ষিণের রাজা উত্তরের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে| উত্তরের রাজাই তাকে আক্রমণ করবে| উত্তরের রাজা রথসমূহ, অশ্বারোহী মানুষ এবং যুদ্ধ জাহাজসমূহ দিয়ে আক্রমণ করবে| উত্তরের রাজার সৈন্যরা বন্যার জলের মতো প্রবাহিত হবে| 41 উত্তরের রাজা সুন্দর দেশকে আক্রমণ করবে| উত্তরের রাজার কাছে অনেক দেশ পরাজিত হবে| কিন্তু ইদোম ও মোয়াব এবং অম্মোন দেশের নেতৃবৃন্দ উত্তরের রাজার হাত থেকে রক্ষা পাবে| 42 উত্তরের রাজা অনেক দেশ আক্রমণ করবে| এমনকি মিশরও উত্তরের রাজার হাত থেকে রক্ষা পাবে না| 43 মিশরের সমস্ত সোনা, রূপো ও ধনসম্পদ তার হস্তগত হবে| লুবীয়রা এবং কূশীয়রা তার অনুচর হবে| 44 কিন্তু পূর্ব ও উত্তর দেশ থেকে আসা খবর শুনতে পেয়ে উত্তরের রাজা ভীত হয়ে পড়বে এবং সে রাগ করবে| সে অনেকগুলি দেশকে পুরোপুরি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ক্রুদ্ধ হয়ে যাত্রা শুরু করবে| 45 সে সমুদ্র ও সুন্দর পবিত্র পর্বতের মাঝখানে তার রাজকীয তাঁবু খাঁটাবে| কিন্তু শেষ পর্য়ন্ত ঐ নিষ্ঠুর রাজার মৃত্যু ঘটবে| তার মৃত্যুর সময় তাকে সাহায্য করার জন্য সেখানে কোন ব্যক্তি উপস্থিত থাকবে না|”‘
1 “স্বপ্নদর্শনে আবির্ভূত ব্যক্তি বলল, ‘দানিয়েল, সেই সময় সেই মহান দূত মীখায়েল উঠে দাঁড়াবে| মীখায়েল তোমার লোকদের রক্ষা করবে| তখন সেখানে এমন সঙ্কট দেখা দেবে, যা আগে কখনও হয়নি| কিন্তু দানিয়েল, সেই সময় পুস্তকে তোমার জাতির মধ্যে যাদের নাম লেখা থাকবে তারা রক্ষা পাবে| 2 সমাধিস্থ মৃতদের মধ্যে অনেকে পুনরায় জেগে উঠবে, তারা আবার জীবন ফিরে পাবে| তারা অমরত্ব পাবে| কেউ কেউ আবার জেগে উঠবে লজ্জার ও অনন্ত ঘৃণার জীবনের উদ্দেশ্যে| 3 জ্ঞানী ব্যক্তিরা আকাশের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠবে| যারা অন্য লোকদের শেখায় কি করে ভালো জীবনযাপন করতে হয, তারা নক্ষত্রের মত চিরকাল উজ্জ্বলভাবে চক্চক্ করবে| 4 “‘কিন্তু দানিয়েল, তুমি এই বাণী অবশ্যই অত্যন্ত গোপনে রাখবে| তুমি এই পুস্তক বন্ধ করে রাখবে| সমাপ্তি সময় না আসা পর্য়ন্ত তুমি তা গোপন রাখবে| জ্ঞানের জন্য অসংখ্য মানুষ এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করবে| এবং এর ফলে সত্যিকারের জ্ঞানের বৃদ্ধি হবে|’ 5 “তখন আমি, দানিয়েল, সামনে তাকালাম এবং অন্য দুজন ব্যক্তিকে দেখলাম| এক জন নদীর এপারে আমার কাছে দাঁড়িয়ে রযেছে এবং অন্যজন নদীর ওপারে| 6 তাদের মধ্যে একজন, ক্ষৌমবস্ত্র পরিহিত জলের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে বলল, ‘বিস্ময়কর ঘটনাগুলি ঘটতে আর কত সময় লাগবে? কখন তা সত্যে পরিণত হবে?’ 7 “ক্ষৌমবস্ত্র পরিহিত মানুষটি নদীর জলের ওপর দাঁড়িয়ে তার দুহাত স্বর্গের দিকে তুলে ধরল| এবং আমি শুনতে পেলাম সে ঈশ্বরের নামে শপথ নিয়ে বলছে, ‘সময়, সময় এবং অর্দ্ধ সময়|পবিত্র জাতির ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হবে এবং সমস্ত বিস্ময়কর ঘটনাগুলি অবশেষে সত্যে পরিণত হবে|’ 8 “আমি উত্তরটা শুনতে পেলেও তার অর্থ বুঝতে পারলাম না| তাই আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘মহাশয়, সবকিছু সত্যে পরিণত হলে কি ঘটবে?’ 9 “সে উত্তরে বলল, ‘দানিয়েল, তুমি তোমার জীবনে ফিরে যাও| এই বাণী লুকানো থাক| সমাপ্তির সময় না আসা পর্য়ন্ত তা গোপন থাকবে| 10 অনেক লোক শুচি এবং পরিষ্কার হয়ে যাবে| কিন্তু দুষ্ট ও শয়তানরা নিজেদের একই রকম রাখবে| এবং ঐ দুষ্ট লোকরা এই কথা বুঝতে পারবে না| কিন্তু জ্ঞানী লোকরা বুঝতে পারবে| 11 নিত্য নৈবেদ্য বন্ধ হবে| তখন থেকে মন্দিরেভয়ানক জিনিষটি রাখার দিন পর্য়ন্ত 1,290 দিন থাকবে| 12 যারা 1,335 দিন ধৈর্য়্য় ধরে অপেক্ষা করে থাকতে পারবে, তারা অত্যন্ত সুখী হবে| 13 “‘দানিয়েল, তোমার জীবনের শেষ দিন পর্য়ন্ত বেঁচে থাকো| তুমি তোমার বিশ্রাম পাবে| সময়ের শেষে তুমি মৃত্যু থেকে জেগে উঠবে এবং তোমার প্রাপ্য় আশীর্বাদসমূহ পাবে|”‘
1 প্রভুর এই বার্তাটি বেরির পুত্র হোশেয়র কাছে এসেছিল| উষিয, য়োথম, আহস এবং হিষ্কিয়- এরা যখন যিহূদার রাজা, সেই সময় এই বার্তাটি এসেছিল| এই সময় যোয়াশের পুত্র যারবিযাম ইস্রায়েলের রাজা ছিলেন| 2 হোশেয়র কাছে এটাই ছিল প্রভুর প্রথম বার্তা| প্রভু বলেছিলেন, “যাও, একজন পতিতাকে বিয়ে কর যার বেশ্যাবৃত্তির দরুন সন্তান হয়েছে| কেন? কারণ এদেশের লোকরা পতিতাদের মতোই ব্যবহার করেছে| তারা প্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছে|” 3 সেজন্য হোশেয় দিব্লাযিমের কন্যা গোমরকে বিয়ে করল| গোমর গর্ভবতী হল এবং হোশেয়কে একটি পুত্র উপহার দিল| 4 প্রভু হোশেয়কে বললেন, “তার নাম য়িষ্রিযেল রাখো| কেন? কারণ কিছুক্ষণের মধ্যে আমি য়িষ্রিযেলের উপত্যকাতে রক্তপাতের জন্য য়েহূর পরিবারকে শাস্তি দেব| তারপর আমি ইস্রায়েলের রাজ্য়কে ধ্বংস করব| 5 এবং সেই সময়ে, য়িষ্রিযেল উপত্যকায ইস্রায়েলের ধনুক ভাঙ্গব|” 6 তারপর গোমর আবার গর্ভবতী হলো এবং একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিল| প্রভু হোশেয়কে বললেন, “তার নাম লো-রুহামা রাখো| কেন? কারণ আমি ইস্রায়েল দেশকে এমাগত ক্ষমা করতে পারব না| আমি আর তাদের ক্ষমা করতে থাকব না| 7 কিন্তু আমি যিহূদা জাতির প্রতি করুণা দেখাব| আমি যিহূদা জাতিকে রক্ষা করবো| আমি তাদের রক্ষা করার জন্য ধনুক অথবা তরবারি ব্যবহার করব না| আমি তাদের রক্ষা করার জন্য যুদ্ধের ঘোড়া অথবা সৈন্য ব্যবহার করব না| আমি আমার নিজের ক্ষমতা বলে তাদের রক্ষা করব|” 8 লো-রুহামার লালন-পালন শেষ করার পর, গোমর আবার গর্ভবতী হল| সে একটি শিশু পুত্রের জন্ম দিল| 9 তখন প্রভু বললেন, “তার নাম লো-অম্মি রাখো| কেন? কারণ তোমরা আমার লোক নও| আমি তোমাদের ঈশ্বর নই|” 10 “ভবিষ্যতে, ইস্রায়েল জাতির লোকসংখ্যা সমুদ্রের বালির মতো অসংখ্য হবে| তুমি বালি পরিমাপ করতে পার না অথবা তার সংখ্যা গুনতেও পার না| তখন এটা যেখানে তাদের বলা হয়েছিল, ‘তোমরা আমার লোক নও,’ সেই জায়গাতেই তাদের বলা হবে, ‘তোমরা জীবন্ত ঈশ্বরের সন্তান|’ 11 “তখন যিহূদাবাসী এবং ইস্রায়েলবাসীরা একত্রিত হবে| তাদের মধ্যে থেকে তারা এক জন শাসককে নির্ধারণ করবে| এবং ঐ দেশের ভূখণ্ডের জন্য তাদের জাতি হবে অনেক বড়!য়িষ্রিযেলের দিন সত্যই মহত্ হবে|”
1 “তখন তোমরা তোমাদের ভাইদের বলবে, ‘তোমরা আমার লোক|’ এবং তোমরা তোমাদের বোনেদের বলবে, ‘তিনি তোমাদের প্রতি কৃপা প্রদর্শন করেছেন|”‘ 2 “তোমার মাযের সঙ্গে তর্ক কর| তর্ক কর! কেন? কারণ সে আমার স্ত্রী নয়! আমি তার স্বামী নই! তাকে বেশ্যার মত হতে বারণ কর| তার স্তন দুটির মধ্য থেকে তার প্রেমিকদের সরিয়ে নিতে বল| 3 যদি সে তার ব্যভিচার বন্ধ করতে অস্বীকার করে, তাহলে আমি তার সাজপোশাক খুলে তাকে নগ্ন করে দেব| তার জন্মের দিনে সে য়েমন ছিল সেই অবস্থায় আমি তাকে ত্যাগ করব| আমি তার লোকদের নিয়ে যাব এবং সে জনহীন শুষ্ক মরুভূমির মতো হয়ে যাবে| তৃষ্ণায যাতে সে মরে আমি সেই ব্যবস্থা করব| 4 আমি তার সন্তানদের প্রতি কোন রকম করুণা করব না| কারণ তারা পতিতার সন্তান| 5 তাদের মা পতিতার মতো ব্যবহার করে| তার কাজের জন্য তাদের মাযের লজ্জা পাওয়া উচিত| সে বলেছিল, ‘আমি আমার প্রেমিকদের কাছে যাব| আমার প্রেমিকরা আমাকে খাবার এবং জল দেয়| তারা আমাকে পশম এবং সিল্কের কাপড় দেয়| তারা আমাকে দ্রাক্ষারস এবং জলপাই তেল দেয়|’ 6 “সেজন্য আমি (প্রভু) তোমার (ইস্রায়েলের) রাস্তা কাঁটা দিয়ে আটকে দেব| আমি একটি দেওয়াল তৈরী করব| তখন সে আর তার পথ খুঁজে পাবে না| 7 সে তার প্রেমিকদের পেছনে ছুটবে, কিন্তু তাদের ধরতে সমর্থ হবে না| সে তার প্রেমিকদের খুঁজে বেড়াবে, কিন্তু তাদের খুঁজে পাবে না| তখন সে বলবে, ‘আমি আমার প্রথম স্বামীর (ঈশ্বর) কাছে ফিরে যাব| যখন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম তখন আমার জীবনটা খুবই ভাল ছিল| এখনকার চেয়ে তখন জীবনটা খুবই ভালো ছিল|’ 8 “সে (ইস্রায়েল) জানত না য়ে আমিই হচ্ছি সেই প্রভু য়ে তাকে শস্য, দ্রাক্ষারস এবং তেল দিতাম| আমি তাকে অনেক বেশী করে রূপো এবং সোনা দিয়ে গেছি| কিন্তু ইস্রায়েলবাসীরা বালের মূর্ত্তি করার সময় ওই সব রূপো এবং সোনা ব্যবহার করেছিল| 9 সেজন্য আমি (ঈশ্বর) ফিরে আসব| ফসল কাটার সময়ে আমি আমার শস্য-কণাগুলিকে ফিরিয়ে নেব| দ্রাক্ষাগুলো তৈরি হবার সময়ে আমি আমার দ্রাক্ষারস ফিরিয়ে নেব| আমি আমার পশম এবং মসীনা বস্ত্রও নিয়ে নেব| সে যাতে তার নগ্ন দেহ আচ্ছাদিত করতে পারে সেজন্য আমি তাকে ওই জিনিসগুলি দিয়েছিলাম| 10 এখন আমি তার সাজ-পোশাক খুলে দেব| সে নগ্ন হবে- যাতে তার সব প্রেমিকরা তাকে দেখতে পায়| আমার শক্তির আওতা থেকে কেউ তাকে রক্ষা করতে পারবে না| 11 আমি (ঈশ্বর) তার সব আমোদ কেড়ে নেব| আমি তার ছুটি, তার অমাবস্যার উত্সব, তার বিশ্রামের দিনগুলিকে থামিযে দেব| তার সব বিশেষ ভোজন উত্সবগুলোকে থামিযে দেব| 12 আমি তার দ্রাক্ষা এবং ডুমুর গাছগুলোকে ধ্বংস করব| সে বলেছিল, ‘আমার প্রেমিকরা এই জিনিসগুলো দিয়েছিল|’ কিন্তু আমি তার বাগানগুলোকে বদলে দেব| বাগানগুলো গভীর জঙ্গলে পরিণত হবে| বন্য পশুরা আসবে এবং ওই জঙ্গলের গাছপালা থেকেই আহার সংগ্রহ করবে| 13 “সে বাল-দের পরিচর্য়া করেছিল| সেজন্য আমি তাকে শাস্তি দেব| সে বাল-দের ধূপ নিবেদন করেছিল| সে নিজেকে অলঙ্কার ও নাকের গযনা দিয়ে সাজিয়ে ছিল| তারপর সে তার প্রেমিকদের কাছে গিয়েছিল এবং আমাকে ভুলে গিয়েছিল|” প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন| 14 “সুতরাং আমি (প্রভু) তার সঙ্গে কল্পনাপ্রসূত কথা বলব| আমি তাকে মরুভূমির দিকে নিয়ে যাব এবং সেখানে তার সঙ্গে নরম সুরে কথা বলব| 15 সেখানে আমি তাকে দ্রাক্ষার ক্ষেতগুলি দেব| আমি তাকে আশার তোরণ হিসাবে আখোর উপত্যকা দেব| তখন সে তার য়ৌবনকালে য়েমন ভাবে আমার সঙ্গে কথা বলত এবং সে যখন মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিল সেই ভাবে আমার সঙ্গে কথা বলবে|” 16 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন|“সেই সময়ে তুমি ‘আমার স্বামী’ বলে আমাকে সম্বোধন করবে| তুমি আমাকে ‘আমার বাল’ বলে ডাকবে না| 17 আমি তার মুখ থেকে বাল-দের নাম কেড়ে নেব| তখন লোকে আর বালের নাম উচ্চারণ করবে না| 18 “সেই সময়, আমি ইস্রায়েলীয়দের জন্য মাঠের জন্তুদের সঙ্গে, আকাশের পক্ষীসমূহের সঙ্গে এবং মাটিতে হামাগুড়ি দেওয়া প্রাণীদের সঙ্গে একটি চুক্তি করব| আমি যুদ্ধের ধনুক, তরবারি এবং অস্ত্র-শস্ত্র ভেঙ্গে দেব| দেশের মধ্যে কোন অস্ত্র-শস্ত্রই পড়ে থাকবে না| আমি দেশটাকে বিপদমুক্ত করব, যাতে ইস্রায়েলের লোক শান্তিতে ঘুমোতে পারে| 19 এবং আমি (প্রভু) চিরকালের জন্য তোমাকে আমার নব্বধূ করব| আমি ধার্মিকতায, ন্যায়বিচারে প্রেমে ও কৃপায় তোমাকে আমার নব্বধূ হিসাবে তৈরি করব| 20 আমি তোমাকে আমার বিশ্বস্ত নব্বধূ হিসাবে তৈরি করব| তখন তুমি প্রভুকে যথার্থভাবে জানতে পারবে| 21 এবং সেই সময়ে, আমি উত্তর দেব|” প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন|“আমি আকাশের সঙ্গে কথা বলব, এবং তারা পৃথিবীতে বৃষ্টি এনে দেবে| 22 পৃথিবী ভুট্টা দ্রাক্ষারস এবং তেল উত্পাদন করবে| তারা য়িষ্রিযেলের প্রযোজন মেটাবে| 23 আমি তার জমিতে বহু বীজ বপন করব| লো-রুহামাকে আমি কৃপা দেখাবো| লো-অম্মিকে, আমি বলব, ‘তুমি আমার লোক’ এবং তারা আমাকে বলবে, ‘আপনি আমাদের ঈশ্বর|”‘
1 তখন প্রভু আবার আমাকে বললেন, “গোমরের অনেক প্রেমিক আছে কিন্তু তোমাকে অবশ্যই তাকে ভালোবেসে য়েতে হবে| কেন? কারণ সেটা প্রভুর মতোই কাজ| প্রভু ইস্রায়েল জাতিকে ভালবেসেই যাচ্ছেন কিন্তু তারা অন্য দেবতাদের পূজা করেই চলেছে| তারা কিশমিশের পিঠে খেতে ভালবাসে|” 2 সেজন্য আমি গোমরকে 6 আউন্স রূপো এবং 9 বুশেল বার্লি দিয়ে কিনে নিলাম| 3 তারপর আমি তাকে বললাম, “তোমাকে অবশ্যই অনেক দিনের জন্য আমার সঙ্গে থাকতে হবে| পতিতার মতো আচরণ কোরো না| তুমি অন্য মানুষদের সঙ্গেও থাকতে পারবে না এবং আমি তোমার সাক্ষী হব|” 4 একই ভাবে, ইস্রায়েলবাসীরা রাজা অথবা নেতাদের ছাড়াই বহুদিন কাটাবে| তাদের উত্সর্গ অথবা স্মরণ স্তম্ভ থাকবে না| তারা যাজকদের বিশেষ পোশাক এফোদ অথবা গৃহদেবতা ছাড়াই থাকবে| 5 এরপর ইস্রায়েলবাসীরা ফিরে আসবে| তারপর তারা তাদের প্রভু, তাদের ঈশ্বর এবং দাযূদ, তাদের রাজার খোঁজে যাবে| শেষের দিনগুলিতে, তারা প্রভুকে এবং তাঁর ধার্মিকতাকে সম্মান দেবার জন্য আসবে|
1 ইস্রায়েলবাসীরা, প্রভুর বার্তা শোন! য়েসব লোকরা এই দেশে বাস করছে প্রভু তাদের বিরুদ্ধে নিজের যুক্তিগুলো বলবেন, “এই দেশের লোকরা সত্যই ঈশ্বরকে জানে না| লোকরা ঈশ্বরের কাছে বিশ্বস্ত এবং অনুগতও নয়| 2 লোকরা দিব্যি দেয়, মিথ্যা বলে, খুন এবং চুরি করে| তারা ব্যভিচারমূলক পাপ কাজ করে আর তাদের বাচচা রয়েছে| লোকরা বারে বারে খুন করে| 3 মৃতের জন্য লোকে য়েভাবে কাঁদে সেই ভাবে দেশটিও কাঁদছে এবং দেশের সব লোকেরা দুর্বল| এমনকি মাঠের পশু, আকাশের পাখী এবং সমুদ্রের মাছরাও মারা যাচ্ছে| 4 কোন লোকেরই অপর একজনের সঙ্গে তর্ক করা বা তাকে দোষী করা উচিত নয়| ওহে যাজক, আমার তর্ক তোমার সঙ্গে! 5 যাজকরা, দিনের বেলায় তোমাদের পতন হবে| রাত্রিবেলায় ভাব্বাদীরাও তোমাদের সঙ্গে পড়ে যাবে| আর আমি তোমাদের মাতাকে ধ্বংস করব| 6 “আমার লোকরা বিনষ্ট হয়েছে কারণ তাদের কোন জ্ঞান নেই| তোমরা শিখতে অস্বীকার করেছো, সেজন্য আমিও তোমাদের আমার যাজকদের কাজ দিতে অস্বীকার করব| তোমরা তোমাদের ঈশ্বরের বিধি ভুলে গিয়েছ, সেজন্য আমি তোমাদের সন্তানদের ভুলে যাব| 7 তারা অহঙ্কারী হয়েছে! তারা আমার বিরুদ্ধে উত্তরোত্তর আরো পাপ কাজ করেছে, সেজন্য আমি তাদের মহত্ত্বকে লজ্জায রূপান্তরিত করব| 8 “যাজকরা লোকদের পাপ কাজের সঙ্গে য়োগ দিয়েছে| তারা অনেক বেশী পরিমাণে ঐ পাপ কাজ করতে চেয়েছে| 9 সেজন্য যাজকরা ঐ লোকদের চেয়ে কোন অংশে ভিন্ন নয়| তারা য়েসব কাজ করেছে তার জন্য আমি তাদের শাস্তি দেব| তারা য়ে ভুল কাজ করেছে তার জন্য আমি প্রতিশোধ নেব| 10 তারা খাবে, কিন্তু তারা তাতে তৃপ্ত হবে না! তারা য়ৌন পাপে লিপ্ত হবে, কিন্তু তাদের কোন সন্তান হবে না| কারণ তারা প্রভুকে ছেড়ে দিয়েছে এবং পতিতার মত থাকে| 11 “য়ৌনপাপ, তীব্র পানীয় এবং নতুন দ্রাক্ষারস এক জন লোকের সোজাসুজিভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা নষ্ট করবে| 12 আমার লোকরা উপদেশের জন্য কাঠের খণ্ডকে জিজ্ঞাসা করছে| তারা ভাবছে, ওই কাঠিগুলো তাদের উত্তর দেবে| কারণ পতিতার মতোই তারা মূর্ত্তিগুলোর পেছনে ছুটেছিল| তারা তাদের ঈশ্বরকে ছেড়ে দিয়েছে এবং পতিতার মতো হয়ে গেছে| 13 তারা পর্বতের ওপর উত্সর্গ নিবেদন করে পাহাড়ের ওপর ওক গাছ, ঝাউ গাছ এবং দেবদারু গাছের তলায় ধূপ জ্বালায| ঐ গাছগুলির ছায়া খুবই সুন্দর দেখায়, সেজন্য তোমাদের মেয়েরা পতিতাদের মতো ঐ গাছের তলায় শুয়ে থাকে এবং তোমাদের পুত্রবধুরা য়ৌন পাপে লিপ্ত হয়| 14 “তোমাদের কন্যারা পতিতার মতো থাকে বলে অথবা তোমাদের পুত্রবধূরা য়ৌন পাপ কাজ করছে বলে আমি তাদের দোষ দেব না| লোকেরা পতিতাদের কাছে যায় এবং তাদের সঙ্গে ঘুমোয| তারা পতিতাদের সঙ্গে যায় এবং মন্দিরে তাদের সঙ্গেই দেবতাকে উত্সর্গ দেয়| ফলে, ঐ বোকা লোকরা নিজেদেরই ধ্বংস করছে| 15 “ইস্রায়েল তুমি একজন পতিতার মতো কাজ করছ; কিন্তু এই বলে যিহূদাকে দোষী হতে দিও না| গিল্গলে অথবা বৈত্-আবন য়েও না| প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় প্রভুর নাম ব্যবহার কোরো না| কখনও বোলো না, ‘জীবন্ত প্রভুর দিব্য়়়!’ 16 প্রভু ইস্রায়েলকে বহু জিনিস দিয়েছেন| তিনি এমনই এক মেষপালকের মতন, যিনি তাঁর মেষগুলোকে প্রচুর ঘাসে ভরা মাঠে নিয়ে যান; কিন্তু ইস্রায়েল হচ্ছে জেদী| ইস্রায়েল ঠিক একটা বাছুরের মতো য়ে বারবার ছুটে পালায| 17 ইফ্রয়িম প্রতিমাগুলির সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে| কাজেই তাকে একা থাকতে দাও| 18 “ইফ্রয়িমরা মাতাল হলে বেশ্যার মত ব্যবহার করে| তারা উত্কোচ ভালবাসে এবং তা দাবী করে| তাদের শাসকরা তাদের লোকদের লজ্জার কারণ হয়| তাদের প্রেমিকদের সঙ্গে থাকতে দাও| 19 বাতাস তার পাখা দিয়ে তাদের বিরক্ত করে| তাদের উত্সর্গ তাদের কাছে লজ্জা আনবে|”
1 “যাজকগণ, ইস্রায়েলীয়রা এবং রাজ-পরিবারের সদস্যরা, আমার কথা শোনো: বিচারে তোমরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছ! তোমরা মিস্পার ফাঁদগুলোর মতো| তোমরা য়েন তাবোরে জমির উপর বিছিযে থাকা জালের মতো| 2 তোমরা অনেক অনেক খারাপ কাজ করেছ| সেজন্য আমি তোমাদের সবাইকে শাস্তি দেব! 3 আমি ইফ্রয়িমকে জানি| ইস্রায়েল আমার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে পারে না| ইফ্রয়িম, এখন তুমি ঠিক পতিতার মতো আচরণ কর| ইস্রায়েল তার পাপের জন্য অশুচি হয়ে গেছে| 4 ইস্রায়েলবাসীরা বহু খারাপ কাজ করেছে এবং ওই খারাপ কাজগুলো তাদের ঈশ্বরের কাছে ফিরে যাওয়ার পক্ষে বাধা হয়ে গেছে| তারা সব সময় কি ভাবে অন্যান্য দেবতার পেছনে ছোটা যায় তার কথাই চিন্তা করে| তারা প্রভুকে জানে না| 5 ইস্রায়েলের অহঙ্কারই তাদের বিরুদ্ধে একটি সাক্ষী| ঐ ইস্রায়েল এবং ইফ্রয়িম তাদের পাপে হোঁচট খেযেছে| যিহূদাও তাদের সঙ্গে হোঁচট খেযেছে| 6 “জনসাধারণের নেতারা প্রভুর খোঁজে যাবে| তারা তাদের সঙ্গে ‘মেষ’ এবং ‘গরুগুলিকেও’ নেবে; কিন্তু তারা প্রভুকে খুঁজে পাবে না| কেন? কারণ তিনি তাদের ছেড়ে চলে গেছেন| 7 তারা প্রভুর প্রতি বিশ্বস্ত ছিল না| তাদের সন্তানরা কোন অপরিচিতজাত| কিন্তু এখন তিনি আবার তাদের এবং তাদের দেশ ধ্বংস করবেন|” 8 “গিবিযোতে ভেরী বাজাও| রামাতে তুরী বাজাও| বৈত্-আবনে সতর্কবাণী দাও| বিন্যামীন, শএু তোমার পেছনে| 9 শাস্তি দেওয়ার সময়ে ইফ্রয়িম শূন্য হয়ে যাবে| আমি (ঈশ্বর) ইস্রায়েলের পরিবারদের এই বলে সতর্ক করে দিচ্ছি য়ে, ওই ব্যাপারগুলো সত্যই ঘটবে| 10 যিহূদার নেতারা চোরদের মতো, যারা অন্য লোকের সম্পত্তি চুরি করার চেষ্টা করে| সেজন্য আমি (ঈশ্বর) তাদের ওপর জলের মতো আমার রোধ ঢেলে দেব| 11 ইফ্রয়িম শাস্তি পাবে, দ্রাক্ষার মতো তাকে চেপে পিষে ফেলা হবে| কারণ সে নোংরা জিনিসকে অনুসরণ করবে বলে ঠিক করেছে| 12 পতঙ্গ য়ে ভাবে কাপড়ের টুকরো নষ্ট করে, সেই ভাবে আমি ইফ্রয়িমকে ধ্বংস করব| একটি কাষ্ঠখণ্ড য়েমন পচনে ক্ষযপ্রাপ্ত হতে থাকে আমি সেই ভাবেই যিহূদাকে ধ্বংস করব| 13 ইফ্রয়িম তার অসুস্থতা দেখেছিল এবং যিহূদা তার আঘাত দেখেছিল; সেজন্য তারা অশূরের কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিল| তারা মহান রাজাকে তাদের সমস্যার কথা বলেছিল| কিন্তু রাজা তোমাদের আরোগ্য করতে পারবে না| তিনি তোমাদের আঘাত নিরাময় করতে পারবেন না| 14 কেন? কারণ আমি ইফ্রয়িমের কাছে সিংহের মতো হব| আমি যিহূদাবাসীদের কাছে যুবক সিংহের মত হব| আমি- হ্যাঁ, আমি (প্রভু) তাদের টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলব| আমি তাদের দূরে বহন করে নিয়ে যাব| কেউ তাদের রক্ষা করতে পারবে না| 15 আমি আমার নিজের জায়গায় ফিরে যাব| যতক্ষণ পর্য়ন্ত না জনসাধারণ স্বীকার করছে য়ে তারা দোষী, যতক্ষণ পর্য়ন্ত না তারা আমাকে খুঁজতে আসছে| হ্যাঁ, তাদের বিপদের সময়ে তারা আমাকে খুঁজে পেতে আপ্রাণ চেষ্টা করবে|”
1 “এসো, চল আমরা প্রভুর কাছে ফিরে যাই| তিনি আমাদের আঘাত করেছেন, কিন্তু তিনিই আমাদের আরোগ্য করবেন| তিনি আমাদের আহত করেছিলেন, কিন্তু তিনি আমাদের (ক্ষতস্থানগুলিকে) পটি দিয়ে বেঁধে দেবেন| 2 দুদিন বাদে তিনি আমাদের জীবন ফিরিয়ে দেবেন| তৃতীয় দিনে, তিনি আমাদের ওঠাবেন| তাহলে আমরা তাঁর সামনে বেঁচে থাকতে পারব| 3 এস, প্রভুর সম্বন্ধে আমরা জ্ঞান সঞ্চয় করি| প্রভুকে জানবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি| য়ে রকম নিশ্চিত ভাবে আমরা জানি য়ে ভোর হতে চলেছে সে রকম ভাবেই আমরা নিশ্চিত য়ে তিনি আসছেন| প্রভু আমাদের কাছে বৃষ্টির মতো আসবেন, বসন্তের বৃষ্টির জল য়েভাবে মাটিকে সিক্ত করে|” 4 “ইফ্রয়িম, তোমার সঙ্গে আমি কি করব? যিহূদা, তোমার সঙ্গে আমি কি করব? তোমার বিশ্বস্ততা তো ভোরের কুযাশার মতো, তোমার বিশ্বস্ততা তো শিশিরের মতো, যা সকালে মিলিযে যায়| 5 তাই আমি তাদের ভাব্বাদীদের দ্বারা কেটে ফেলেছি| আমার আদেশেই তাদের হত্যা করা হয়েছে; যাতে ন্যায় তোমার কাছ থেকে আলোর মতো বেরিয়ে য়েতে পারে| 6 কারণ, আমি বিশ্বাসপূর্ণ ভালোবাসা চাই, উত্সর্গ নয়| আমি চাই লোকে ঈশ্বরকে জানুক, হোমবলি উত্সর্গ নয়| 7 কিন্তু লোকে চুক্তি ভেঙে ছিল, ঠিক আদম য়ে ভাবে ভেঙে ছিল| তাদের রাজ্য়ে তারা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত| 8 গিলিয়দ অধর্মচারীদের শহর| সেখানকার লোকরা চালাকি করে অন্যদের হত্যা করেছে| 9 ডাকাতরা লুকিয়ে থাকে, পথে কাউকে আক্রমণ করার জন্য অপেক্ষা করে| একই ভাবে, যাজকরা শিখিমের রাস্তার ওপর অপেক্ষা করে এবং পথচারীদের আক্রমণ করে তারা অনেক অন্যায় করেছে| 10 ইস্রায়েল জাতির মধ্যে একটি ভয়ঙ্কর জিনিস দেখেছি| ইফ্রয়িম ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বস্ত ছিল| পাপে ইস্রায়েল নোংরা হয়ে গেছে| 11 যিহূদা, তোমার জন্য ফসল কাটারও একটা সময় আছে| যখন আমি আমার লোকদের বন্দী দশা থেকে ফিরিয়ে আনব, তখনই এটা ঘটবে|”
1 “আমি ইস্রায়েলকে আরোগ্য করব! তখন লোকরা জানতে পারবে য়ে ইফ্রয়িম পাপ করেছিল| লোকে শমরিয়ার মিথ্যা জানতে পারবে| য়ে চোররা শহরে আসা-যাওয়া করে লোকরা তাদের সম্বন্ধে জানবে| 2 ওই লোকরা বিশ্বাস করে না য়ে আমি তাদের অপরাধ স্মরণ করব, তাদের মন্দ কাজগুলি চারিদিকেই রয়েছে| আমি তাদের পাপগুলো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি| 3 তারা তাদের নেতাদের মিথ্যাচারণ দিয়ে খুশী করে| তাদের ভ্রান্ত দেবতারা তাদের নেতাদের খুশী রাখে| 4 এক জন রুটিওয়ালা রুটি বানানোর জন্য ময়দার তাল তৈরি করে তা উনুনে রাখে| রুটি ফুলে উঠলে রুটিওয়ালা উনুনের অাঁচ আর বাড়িযে দেয় না| কিন্তু ইস্রায়েলবাসীরা সে রকম নয়| ইস্রায়েলবাসীরা সব সময় তাদের আগুনের অাঁচ বাড়িযে দিচ্ছে| 5 আমাদের রাজার দিনে দ্রাক্ষারসের উত্তাপে নেতারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে| সেজন্য রাজা বিদ্রূপকারীদের বিরুদ্ধে হাত প্রসারিত করেছেন| 6 লোকরা তাদের গোপন ফন্দী আঁটে| উত্তেজনায তাদের হৃদয় উনুনের মতো জ্বলে| সারারাত ধরে তাদের উত্তেজনা জ্বলে; এবং সকাল বেলায়ও সেই উত্তেজনা আগুনের মতো ভীষণ গরম| 7 তারা সবাই গরম উনুনের মতন| তারা তাদের শাসকদের ধ্বংস করেছে| তাদের সব রাজারা ভূপতিত হয়েছে| তাদের মধ্যে কেউই সাহায্যের জন্য আমাকে ডাকেনি|” 8 “ইফ্রয়িম অন্য জাতিসমূহের সঙ্গে মিশছে| ইফ্রয়িম কেক্-এর মত যার দুদিক স্য়াঁকা হয়নি| 9 অপরিচিতরা ইফ্রয়িমের ক্ষমতা ধ্বংস করে; কিন্তু ইফ্রয়িম সে বিষয় কিছুই জানে না| ইফ্রয়িমের ওপর পাকা চুল ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে; কিন্তু ইফ্রয়িম এসবের বিষয় কিছুই জানে না| 10 ইফ্রয়িমের অহঙ্কার কেবল মাত্র তার বিরুদ্ধেই কথা বলে| সাধারণ মানুষের অনেক বিপদ-আপদ গেছে; কিন্তু তবুও তারা এখনও তাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে ফিরে যায় নি| লোকরা ঈশ্বরের দিকে সাহায্যের জন্য তাকাযনি| 11 সেজন্য ইফ্রয়িম বোকা ঘুঘু পাখির মতোই হয়ে গেছে, যার বোধ্বুদ্ধি নেই| লোকরা সাহায্যের জন্য মিশরকে ডেকেছিল| লোকরা সাহায্যের জন্য অশূরে গিয়েছিল| 12 তারা সাহায্যের জন্য ওই দেশগুলোতে যায়, কিন্তু আমি তাদের ফাঁদে ফেলব| আমি আমার জাল তাদের উপর ছুঁড়ে ফেলব এবং আকাশের পাখীদের মতো আমি তাদের নীচে নামাব| তাদের চুক্তির জন্য আমি তাদের শাস্তি দেব| 13 এটা তাদের পক্ষে খারাপ হবে| তারা আমাকে পরিত্যাগ করেছে| তারা আমার আদেশ মানতে অস্বীকার করেছে; সেজন্য তারা ধ্বংস হবে| আমি ওই লোকদের রক্ষা করেছি; কিন্তু তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে কথা বলে| 14 তারা কখনোই আমাকে পুরোপুরি আন্তরিকভাবে ডাকেনি| পরিবর্ত্তে তারা শস্য এবং নতুন দ্রাক্ষারসের জন্য তাদের বিছানায শুয়ে আর্তনাদ করছে| তারা বন্য পশুর মতো তাদের মূর্ত্তিসমূহের কাছে আর্তনাদ করছে| কিন্তু তারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছে| 15 আমি তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলাম এবং তাদের হাত শক্তিশালী করেছিলাম; কিন্তু তারা আমার বিরুদ্ধে অন্যায় ফন্দী এঁটেছে| 16 কিন্তু তারা ছিল একটি বঞ্চক ধনুকের31 মত| তারা ফিরেছিল, কিন্তু আমার কাছে ফিরে আসেনি|32 তাদের নেতারা তাদের রুদ্ধ কথাবার্তার দরুন তাদের তরবারির আঘাতেই নিহত হবে| তখন মিশরবাসীরা তাদের দেখে হাসবে|
1 “তোমাদের ঠোঁটে শিঙা রাখো এবং শিঙা বাজিয়ে সতর্ক করে দাও| প্রভুর গৃহের ওপর ঈগল পাখীর মতো হও| ইস্রায়েলবাসীরা আমার চুক্তি ভঙ্গ করেছে| তারা আমার বিধি মান্য করেনি| 2 তারা আমার দিকে তীব্রস্বরে চিত্কার করে, ‘আমার ঈশ্বর, আমরা ইস্রায়েলবাসীরা আপনাকে জানি!’ 3 কিন্তু ইস্রায়েলবাসীরা ভালো জিনিস নিতে অস্বীকার করে; সেজন্য শএুরা তাদের পেছনে তাড়া করে| 4 ইস্রায়েলীয়রা তাদের রাজাদের মনোনীত করেছে; কিন্তু তারা আমার কাছে পরামর্শ নিতে আসেনি| ইস্রায়েলবাসীরা নেতাদের নির্বাচন করে; কিন্তু যাদের আমি জানি, তারা তাদের নির্বাচন করেনি| ইস্রায়েলবাসীরা নিজেদের জন্য তাদের সোনা ও রূপা দিয়ে মূর্ত্তি বানায়| সুতরাং তারা ধ্বংস হবে| 5 হে শমরিয়া মূর্ত্তি ঈশ্বর তোমাদের গোবত্স মূর্ত্তি গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন|ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমি ইস্রায়েলবাসীদের বিরুদ্ধে খুবই রুদ্ধ|’ ইস্রায়েলবাসীরা তাদের পাপকাজের জন্য শাস্তি পাবে| কিছু কর্মী ঐ মূর্ত্তিগুলিকে তৈরি করছে, তারা ঈশ্বর নয়| শমরিয়ার বাছুর টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে ফেলা হবে| 6 7 ইস্রায়েলীয়রা নির্বোধের মত একটা কাজ করেছিল এবং সেটা ছিল য়েন বাতাস রোপণ করবার চেষ্টার মত| তারা কেবল কষ্ট পাবে| তারা কেবল মাত্র সাইক্লোনের মত শস্য পাবে| মাঠে শস্য বাড়বে; কিন্তু সে শস্য কোন খাদ্য দেবে না| এমনকি যদি কিছু জন্মায়, তবে অপরিচিতরাই তা খেযে নেবে| 8 ইস্রায়েল ধ্বংস হয়েছিল| ইস্রায়েলীয়রা জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে য়েন কোন খাবার য়েটা কারো ভাল লাগেনি বলে ফেলে দেওয়া হয়েছে| 9 ইফ্রয়িম তাকে তোষামোদ করেছিল| বন্য গাধার মত সে ঘুরতে ঘুরতে অশূরীয়তে গিয়ে পৌঁছেছিল| 10 ইস্রায়েলীয়রা জাতিগণের মধ্যে তাদের ‘প্রেমিকদের’ কাছে গিয়েছিল| কিন্তু আমি ইস্রায়েল জাতিদের একত্রিত করব| কিন্তু তাদের সেই প্রবল ক্ষমতাবান রাজার থেকে তাদের কিছুটা কষ্ট ভোগ করতেই হবে| 11 ইফ্রয়িম অনেক বেশী করে পূজো বেদী তৈরি করেছে এবং সেটা তৈরি করাটা পাপ হয়েছে| সেই পূজো বেদীগুলো ইফ্রয়িমের পাপের পূজো বেদী| 12 এমনকি যদি আমি ইফ্রয়িমের জন্য 10,000 বিধিও রচনা করি তবু সেগুলোর দিকে সে এমন চোখে দেখবে য়েন সেগুলো কোন অপরিচিতদের জন্য রচিত হয়েছে| 13 ইস্রায়েলবাসীরা বলি উত্সর্গ করতে ভালবাসে| তারা মাংস উত্সর্গ করে এবং তা খায়| প্রভু তাদের উত্সর্গ গ্রহণ করেন না| তিনি তাদের পাপগুলো মনে রাখেন এবং তিনি তাদের শাস্তি দেবেন| বন্দী হিসেবে তাদের মিশরে নিয়ে যাওয়া হবে| 14 ইস্রায়েল রাজাদের প্রাসাদ তৈরি করে; কিন্তু তারা তাদের নিজেদের নির্মাতাকে ভুলে গেছে! এখন যিহূদা দুর্গ তৈরি করছে; কিন্তু আমি যিহূদার শহরগুলোর জন্যে আগুন পাঠাব; এবং সেই আগুন তার দুর্গগুলো ধ্বংস করে দেবে!”
1 ইস্রায়েল, তোমরা অন্য জাতির মতো উত্সব কোরো না, আনন্দিত হযো না! তোমরা পতিতার মতো ব্যবহার করেছো এবং তোমরা ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছো| প্রত্যেক মাড়াইয়ের জমিতে তোমরা য়ৌন পাপ কাজ করেছিলে| 2 কিন্তু ওই মাড়াইয়ের জমি থেকে পাওয়া শস্য যথেষ্ট পরিমাণে ইস্রায়েলকে খাদ্য দেবে না| সেখানে ইস্রায়েলের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে দ্রাক্ষারসও থাকবে না| 3 ইস্রায়েল জাতি প্রভুর দেশে বাস করতে পারবে না| ইফ্রয়িম মিশরে ফিরে যাবে| য়ে খাদ্যগুলো তাদের খাওয়া উচিত নয়, সেই খাদ্যগুলি তারা অশূরীয়তে খাবে| 4 ইস্রায়েল জাতি প্রভুকে দ্রাক্ষারস নৈবেদ্য দেবে না| তারা তার কাছে বলি উত্সর্গ করবে না| তাদের উত্সর্গীকৃত খাদ্য শেষের সময়কার খাদ্যের মতো মনে হবে| তারা যা খাবে তা অপরিচ্ছন্ন হবে| তাদের রুটি প্রভুর মন্দিরে যাবে না- তা তাদের নিজেদেরই খেতে হবে| 5 তারা (ইস্রায়েল জাতি) প্রভুর ছুটির দিন অথবা উত্সবের দিন উদযাপন করতে পারবে না| 6 ইস্রায়েলের লোকরা সে দেশ ত্যাগ করেছে তার কারণ শএুরা তাদের সর্বস্ব নিয়ে নিয়েছে| কিন্তু মিশর লোকগুলোকেই নেবে| মোফ তাদের সমাহিত করবে| তাদের রূপোর কোষাগারে আগাছা জন্মাবে| যেখানে ইস্রায়েলীয়রা বাস করত সেখানে কাঁটাগাছ জন্মাবে| 7 ভাব্বাদীরা বলে, “ইস্রায়েল, এই বিষয়গুলি তোমরা শেখো: শাস্তির সময় এসেছে| তোমরা য়ে মন্দ কাজগুলো করেছিলে তার খেসারত দেবার সময় এসেছে|” কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা বলছে, “ভাব্বাদীরা নির্বোধ| ঈশ্বরের আত্মা বিশিষ্ট এই ব্যক্তিটি বিকৃত মস্তিষ্ক|” ভাব্বাদীরা বলছে, “তোমার খারাপ কাজের জন্যে এবং তোমার ঘৃণার জন্যও তুমি শাস্তি পাবে| তোমার কুত্সিত পাপ ও ঘৃণার জন্য তুমি শাস্তি পাবে|” 8 ঈশ্বর এবং ভাব্বাদীরা হচ্ছে পাহারাওয়ালার মতো যারা ইফ্রয়িমের ওপর নজর রাখছে| কিন্তু পথে অনেক ফাঁদ পাতা আছে| লোকরা ভাব্বাদীদের ঘৃণা করে| এমনকি, ঈশ্বরের আবাসের মধ্যেও লোকরা ভাব্বাদীকে ঘৃণা করে| 9 গিবিয়ার সময়ের মতই ইস্রায়েলীয়রা দুষ্ট| প্রভু ইস্রায়েল জাতির পাপ কাজ মনে রাখবেন| তিনি তাদের পাপের জন্য শাস্তি দেবেন| 10 য়ে সময় আমি ইস্রায়েলকে পেলাম, সে সময় তারা ছিল মরুভূমিতে পাওয়া টাটকা দ্রাক্ষার মতো| তারা ঋতু সূচনায গাছের প্রথম ডুমুরগুলির মতো ছিল| কিন্তু তারপর তারা বালপিযোরের কাছে এল এবং বদলে গেল, তাই তাদের আমায় পচে যাওয়া ফলের মত ছুঁড়ে ফেলে দিতে হল| তারা সেই ভয়ঙ্কর জিনিসের (মূর্ত্তির) মতোই হয়ে উঠল যাদের তারা ভালবাসত| 11 একটি পাখীর মতোই ইফ্রয়িমের মহিমা উড়ে যাবে| সেখানে আর কেউ গর্ভবতী হবে না| কোন জন্ম হবে না, কোন শিশু থাকবে না| 12 কিন্তু যদি কোন ইস্রায়েলীয়রা তাদের সন্তানদের লালন-পালন করে তাহলেও সে তাদের কোন সাহায্যে আসবে না| আমি তাদের কাছ থেকে শিশুদের নিয়ে নেব| আমি তাদের ত্যাগ করব, এবং ঝামেলা ছাড়া তাদের কাছে আর কিছুই থাকবে না| 13 আমি দেখতে পাচ্ছি য়ে ইফ্রয়িম তার সন্তানদের ফাঁদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে| ইফ্রয়িম তার সন্তানদের হত্যাকারীর দিকে নিয়ে যাচ্ছে| 14 প্রভু, আপনি যা চান তাই তাদের দিন| তাদের এমন একটি জরাযু দিন যাতে সন্তান ধারণ না করে| তাদের এমন স্তন দিন যা দুধ দিতে পারে না| 15 তাদের সব মন্দতা গিল্গলে রয়েছে| আমি সেখানে তাদের ঘৃণা করতে আরম্ভ করেছি| আমি তাদের আমার বাড়ি ছাড়তে বলপ্রযোগ করব কারণ তারা সব পাপ কাজ করেছে| আমি তাদের আর কখনোই ভালবাসব না| তাদের নেতারা বিদ্রোহী, তারা আমার বিরুদ্ধে গেছে| 16 ইফ্রয়িম শাস্তি পাবে| তাদের মূল শুকিয়ে যাচ্ছে| তাদের আর সন্তান হবে না| সন্তানের জন্ম হয়ত তারা দিতে পারে, কিন্তু তাদের শরীর থেকে য়ে প্রিয সন্তান সৃষ্টি হবে তাদের আমি হত্যা করব| 17 ওই লোকরা আমার ঈশ্বরের কথা শুনবে না| সেজন্য তিনিও তাদের কথা শুনতে অস্বীকার করবেন| তারা গৃহহীন হয়ে অন্য জাতের মানুষের মধ্যে ঘুরে বেড়াবে|
1 ইস্রায়েল একটি দ্রাক্ষা গাছের মতো, যা প্রচুর পরিমাণে ফল উত্পন্ন করে| কিন্তু ইস্রায়েল য়তোই বেশী বেশী পরিমাণে জিনিস পেয়েছে, ততোই মূর্ত্তিদের সম্মানার্থে সে আরো বেশী করে বেদী তৈরি করেছে| তাদের দেশ আস্তে আস্তে ভালোর দিকে গেছে, সেজন্য সেও মূর্ত্তিদের সম্মানার্থে দেবার জন্য ভালো ভালো পাথর বসিযেছে| 2 তাদের আনুগত্য বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল| কিন্তু এখন তাদের নিজেদের অপরাধ স্বীকার করতে হবে| প্রভু তাদের পূজো বেদী-গুলোকে ভেঙে ফেলবেন| তিনি তাদের স্মরণ স্তম্ভগুলোও ধ্বংস করবেন| 3 এখন ইস্রায়েলীয়রা বলে, “আমাদের কোন রাজা নেই| আমরা প্রভুকে সম্মান করি না! এবং তাঁর রাজা আমাদের কিছুই করতে পারে না!” 4 তারা প্রতিশ্রুতি করেছে- কিন্তু তারা কেবল মিথ্যা কথাই বলছে| তারা তাদের প্রতিশ্রুতিগুলি রাখে নি! তারা অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে| ঈশ্বর ওই চুক্তিগুলি পছন্দ করেন না| বিচারকরা য়েন, লাঙল দেওয়া জমিতে গজিযে ওঠা বিষাক্ত আগাছার মতন| 5 শমরিয়ার লোকরা বৈত্-আবনের বাছুরদের পূজা করে| ওই লোকরা সত্যই কাঁদবে| ওই যাজকরা সত্যই কাঁদবে| কারণ তাদের সুন্দর মূর্ত্তি চলে যাচ্ছে| মূর্ত্তিটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে| 6 এটাকে অশূরীয়দের মহান রাজার উপহার হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে| তিনি ইফ্রয়িমের এই লজ্জাকর মূর্ত্তি রেখে দেবেন| এই মূর্ত্তির জন্য ইস্রায়েল লজ্জিত হবে| 7 শমরিয়ার ভ্রান্ত দেবতা ধ্বংস হবে| সেটা জলের ওপর দিয়ে ভেসে যাওয়া কাঠের খণ্ডের মতো মনে হবে| 8 ইস্রায়েল পাপ করছে এবং বহু উচ্চস্থান তৈরী করেছে| আবনের উচ্চস্থানগুলি ধ্বংস হবে| কাঁটাগাছ এবং আগাছা তাদের বেদীর ওপর জন্মাবে| তখন তারা পর্বতদের বলবে, “আমাদের ঢেকে দাও!” এবং পাহাড়গুলোকে বলবে, “আমাদের ওপর ভেঙ্গে পড়ো!” 9 ইস্রায়েল, তুমি গিবিয়ার সময় থেকে পাপ কাজ করেছো| (ওই লোকেরা সেখানে পাপ কাজ চালিয়ে গেছে|) গিবিয়াতে সত্য়িই ওই মন্দ লোকেরা যুদ্ধের মুখে পড়বে| 10 আমি তাদের শাস্তি দিতে আসবো| সৈন্যরা একত্রিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে| তারা ইস্রায়েলকে তাদের উভয় পাপের জন্যে শাস্তি দেবে| 11 ইফ্রয়িম একটি শিক্ষা দেওয়া বাছুরের মতো য়ে শস্য মাড়াইয়ের জমির উপর দিয়ে হাঁটতে ভালবাসে| আমি তার ঘাড়ের উপর দাসত্বের একটা ভালো জোযাল রাখব| আমি ইফ্রয়িমের উপর দড়ি রাখব| যখন যিহূদা জমি চাষ করতে আরম্ভ করবে| যাকোব নিজেই জমিটাকে ভেঙে দেবে| 12 তুমি যদি ধার্মিকতার বীজ বপন করো, তবে তুমি প্রকৃত ভালবাসার ফসল পাবে| তোমার জমি চাষ করো, তবে তুমি প্রভুর সঙ্গে ফসল তুলতে পারবে| তিনি আসবেন, এবং বৃষ্টি পড়ার মতো তোমার ওপরে ধার্মিকতা বর্ষণ করবেন! 13 কিন্তু তুমি অসত্ জিনিস বপন করেছো, এবং ফসল হিসেবে অশান্তিই পেয়েছো| তুমি তোমার মিথ্যার ফল খেযেছিলে| কারণ তুমি তোমার শক্তিতে এবং তোমার সৈন্যদের ওপর বিশ্বাস করেছো| 14 সেজন্যে তোমার সৈন্যরা যুদ্ধের কোলাহল শুনবে এবং তোমাদের সব দুর্গগুলি ধ্বংস হবে| এটা সেই সময়ের মতো হবে যখন শল্মন বৈত্-অর্ব্বেল ধ্বংস করেছিল| সেই যুদ্ধের সময়, মাযেরা তাদের সন্তানদের সঙ্গেই নিহত হয়েছিল| 15 এবং তোমাদের ক্ষেত্রে বৈথেলে সেই রকমই ঘটবে| কারণ তোমরা অনেক অশুভ কাজ করেছিলে| যখন সেই দিনটি আসবে, তখন ইস্রায়েলের রাজা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে|”
1 প্রভু বলেছেন, “ইস্রায়েল যখন শিশু ছিল তখন আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম; আমি আমার পুত্রকে মিশর থেকে ডেকে নিয়েছিলাম| 2 কিন্তু আমি য়তো বেশী করে ইস্রায়েলীয়দের ডেকেছি ততোই বেশী করে ইস্রায়েলীয়রা আমাকে ছেড়ে গেছে| ইস্রায়েলীয়রা বালদের উ?শ্যে বলি দিয়েছিল| তারা মূর্ত্তিগুলির সামনে ধূপ বালিয়েছিল| 3 “কিন্তু আমিই ইফ্রয়িমকে হাঁটতে শিখিযেছিলাম! আমি ইস্রায়েলীয়দের আমার বাহুর মধ্যে নিয়েছিলাম! আমিই তাদের আরোগ্য করেছিলাম! কিন্তু তারা তা জানে না| 4 আমি তাদের দড়ি দিয়ে পথ দেখিয়েছিলাম| কিন্তু সে দড়ি ছিল ভালবাসারই দড়ি| আর আমিই তাদের কাছে সেই লোকেদের মত ছিলাম যারা ঘাড় থেকে য়োযাল উঠিযে নেয়| আমিই নীচু হয়ে তাদের খাওয়াতাম| 5 “ইস্রায়েল জাতি ঈশ্বরের দিকে ফিরতে অস্বীকার করেছিল| সেজন্য তারা মিশরে যাবে! অশূর রাজা তাদের রাজা হবে| 6 তরবারি তাদের শহরের বিরুদ্ধেই ঘুরবে| সেই তরবারি তাদের শক্তিশালী লোকেদের হত্যা করবে| সেটা তাদের নেতাদেরও ধ্বংস করবে| 7 “আমার লোকেরা আশা করে য়ে আমি তাদের কাছে ফিরে যাব| তারা স্বর্গের ঈশ্বরকে ডাকবে, কিন্তু ঈশ্বর তাদের সাহায্য করবে না|”প্রভু ইস্রায়েলকে ধ্বংস করতে চাইছেন না 8 “ইফ্রয়িম আমি তোমাকে ছাড়তে চাইছি না| ইস্রায়েল, আমি তোমাকে রক্ষা করতে চাই| আমি তোমাকে অদ্মার মতো হতে দেব না! আমি তোমাকে সবোযিমের মতো হতে দেব না! আমি তোমার মন বদলাচ্ছি | তোমাদের প্রতি আমার ভালোবাসা খুবই তীব্র| 9 আমি আমার ভয়ঙ্কর রোধক কখনই জয়ী হতে দেব না| আমি আবার ইফ্রয়িমকে ধ্বংস করব না| আমি ঈশ্বর, আমি মানুষ নই| আমিই সেই পবিত্রজন, আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি| আমি এোধ প্রকাশ করব না| 10 আমি সিংহের মতন গর্জন করব| আমি গর্জন করব এবং আমার সন্তানরা আসবে ও আমাকে অনুসরণ করবে| আমার সন্তানরা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে পশ্চিম দিক থেকে আসবে| 11 পাখীর মতন কাঁপতে কাঁপতে তারা মিশর থেকে আসবে| অশূরীয় দেশ থেকে তারা ঘুঘু পাখীর মতো কাঁপতে কাঁপতে আসবে; এবং আমি তাদের গৃহে ফিরিয়ে নেব|” প্রভু এই কথাই বলেছেন| 12 ইফ্রয়িম তার মূর্ত্তিদের দ্বারা আমাকে ঘিরে রেখেছে| ইস্রায়েলবাসীরা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল| এবং তারা ধ্বংস হয়ে গেছে! কিন্তু যিহূদা এলের সঙ্গে এখনও ঘুরছে| যিহূদা সেই পবিত্রদের কাছে বিশ্বস্ত|”
1 ইফ্রয়িম তার সময় নষ্ট করছে- ইস্রায়েল সারাদিন ধরে “হাওযার পেছনে ছুটছে|” জনসাধারণ আরো বেশী করে মিথ্যা বলছে| তারা আরো বেশী চুরি করছে| তারা অশূরের সঙ্গে চুক্তি করেছে, এবং তাদের জলপাই তেল মিশরে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে| 2 প্রভু বলেছেন, “ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে আমার বলবার বিষয় আছে| যাকোব তার কাজের জন্যে অবশ্যই শাস্তি পাবে| য়ে সব খারাপ কাজ সে করেছে তার জন্য সে অবশ্যই শাস্তি পাবে| 3 এমন কি যাকোব যখন তার মাযের গর্ভে ছিল, তখন থেকেই সে তার ভাইদের বিরুদ্ধে চএান্ত করতে শুরু করে দিয়েছিল| যাকোব একজন শক্তিশালী যুবক ছিল; এবং সেই সময় সে ঈশ্বরের সঙ্গে লড়াই করেছিল| 4 সে ঈশ্বরের দূতের সঙ্গে লড়াই করেছিল এবং জিতেছিল| সে কেঁদে অনুগ্রহ চেয়েছিল| বৈথেলে এই ঘটনা ঘটে| সেখানে, সে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিল| 5 হ্যাঁ, সৈন্যবাহিনীর ঈশ্বর হচ্ছেন যিহোবা| তাঁর নাম যিহোবা (প্রভু)| 6 সেজন্য তোমরা তোমাদের ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসো| তাঁর বশবর্তী হও, সঠিক কাজ কর! সব সময় তোমার ঈশ্বরকে বিশ্বাস কর! 7 “যাকোব একজন পাকা ব্যবসায়ী লোক| সে তার বন্ধুদেরও প্রতারণা করে! এমনকি তার দাঁড়িপাল্লাও ঠিক নেই| 8 ইফ্রয়িম বলেছিল, ‘আমি একজন ধনী! আমি প্রকৃত ধন খুঁজে পেয়েছি! কোনো ব্যক্তি আমার অপরাধ সম্পর্কে জানতে পারবে না| কোনও ব্যক্তিই আমার পাপের সম্বন্ধে জানতে পারবে না|’ 9 “কিন্তু মিশরের ভূমিতে তোমরা যতদিন ছিলে ততদিন আমিই তোমাদের প্রভু, ঈশ্বর ছিলাম| ঈশ্বর সমাগম তাঁবুতে থাকার সময়ের মতো আমি তোমাদের তাঁবুতে বাস করবার ব্যবস্থা করব| 10 আমি ভাব্বাদীদের সঙ্গে কথা বলেছি| আমি তাদের অনেক দর্শনশক্তি দিয়েছি| আমার শিক্ষা তোমাদের দেওয়ার জন্য আমি ভাব্বাদীদের অনেক পথ দেখিয়েছি| 11 কিন্তু গিলিয়দবাসীরা পাপী| সেখানে অনেকগুলো ভয়ঙ্কর মূর্ত্তি আছে| গিল্গলের লোকেরা ষাঁড়ের কাছে বলি উত্সর্গ করে| ওই লোকেদের বহু পূজোর বেদী আছে| চষা জমিতে আবর্জনার সারির মত সেখানে বেদীর সারি তৈরী হয়েছে| 12 যাকোব অরামের দেশে পালিয়ে গিয়েছিল| সেই জায়গায় ইস্রায়েল স্ত্রী পাবার জন্যে কাজ করেছিল| আরেকটি স্ত্রী পাবার জন্য সে মেষগুলির দেখাশোনা কর়েছিল| 13 “কিন্তু ঈশ্বর একজন ভাব্বাদীকে ব্যবহার করে ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বের করে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং ইস্রায়েলকে নিরাপদে রাখার জন্য প্রভু একজন ভাব্বাদীকে ব্যবহার করবেন| 14 কিন্তু ইফ্রয়িম প্রভুকে অত্যন্ত রুদ্ধ করে তুলল| ইফ্রয়িম বহু লোককে হত্যা করেছিল সেজন্য সে তার অপরাধের শাস্তি পাবে| তার গুরু (প্রভু) তাকে তার অবমাননা সহ্য করতে বাধ্য করবেন|”
1 “ইফ্রয়িম ইস্রায়েলে নিজেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল| ইফ্রয়িম কথা বলত এবং জনসাধারণ ভয়ে কাঁপত| কিন্তু ইফ্রয়িম পাপ করেছিল, সে বালকে পূজো করতে আরম্ভ করেছিল| 2 এখন ইস্রায়েল জাতি এমশঃ আরো বেশী পাপ করছে| তাদের নিজেদের জন্য তারা মূর্ত্তি তৈরি করছে| মজুররা রূপো দিয়ে ওই সৌখীন মূর্ত্তিগুলো তৈরি করছে| তারপর ওই লোকরা তাদের মূর্ত্তিগুলির সঙ্গে কথা বলছে| ওই মূর্ত্তিগুলির জন্যে তারা বলি উত্সর্গ করছে| তারা ওই সোনার বাছুরগুলোকে চুমু খাচ্ছে| 3 সে জন্যেই ওই লোকরা শীঘ্রই অদৃশ্য হয়ে যাবে| তারা হবে ভোরবেলায় আসা কুযাশার মতো| কুযাশা য়েমন আসে এবং তাড়াতাড়ি অদৃশ্য হয়ে যায়| ইস্রায়েল জাতিরা ভূষির মতোই হবে যা মাড়াইয়ের ঘর থেকে উড়ে যায়| ইস্রায়েল জাতি হবে ধোঁযার মত, য়েটা চিমনি থেকে ওঠে এবং অদৃশ্য হয়ে যায়| 4 “যখন থেকে তোমরা মিশরের মাটিতে আছো তখন থেকেই আমি তোমাদের প্রভু ঈশ্বর| তোমরা আমাকে ছাড়া অন্য কোন ঈশ্বরকে চিনতে না| আমি ছাড়া আর কোন ত্রাণকর্তা নেই| 5 আমি সেই মরুভূমিতে তোমাদের চিনতাম- আমি সেই সমতল শুকনো মাটির দেশে তোমাদের চিনতাম| 6 “আমি ইস্রায়েল জাতিকে খাদ্য জুগিয়েছি; তারা সেই খাদ্য খেযেছে| তারা পেট ভরে খেযেছে এবং খুশী হয়েছে| (তারপর) তারা অহঙ্কারী হয়েছে এবং আমাকে ভুলে গেছে! 7 “সেজন্য আমি তাদের কাছে সিংহের মতোই হব| আমি চিতাবাঘের মতোই রাস্তায় অপেক্ষা করব| 8 আমি তাদের ভাল্লুকের মতো আক্রমণ করব যার বাচচাদের কেড়ে নেওয়া হয়েছে| আমি তাদের আক্রমণ করব- তাদের বুকগুলোকে একটানে চিরে ফেলব| আমি সিংহ অথবা বন্য জীব-জন্তুদের মতোই শিকারকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাব|” 9 “ইস্রায়েল, আমি তোমাকে সাহায্য করেছিলাম; কিন্তু তোমরা আমার বিরুদ্ধে গেছো| সেজন্য এখন আমি তোমাদের ধ্বংস করব! 10 তোমাদের রাজা কোথায়? তোমাদের কোন শহরেই সে তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না! তোমাদের বিচারকরা কোথায়? তোমরা তাদের খোঁজ করে বলছো, ‘আমাদের একজন রাজা এবং কিছু নেতা দাও|’ 11 আমি রুদ্ধ হয়েছিলাম এবং আমি তোমাকে একজন রাজা দিয়েছিলাম| তারপর আমি যখন খুবই রুদ্ধ হয়েছিলাম, তখন তাকে নিয়ে গিয়েছিলাম| 12 “ইফ্রয়িম তার দোষ লুকোবার চেষ্টা করেছিল| সে ভেবেছিল, তার পাপগুলো গোপন বিষয় কিন্তু সে ওই কাজের জন্য শাস্তি পাবে| 13 একজন স্ত্রীলোক প্রসব করার সময় য়ে যন্ত্রণা অনুভব করে, তার শাস্তিও সেই রকম হবে| সে কখনোই জ্ঞানী পুত্র হতে পারবে না| তার জন্মাবার সময় আসবে এবং সে বেঁচে থাকতে পারবে না| 14 “আমি তাদের কবর থেকে রক্ষা করব! আমি তাদের মৃত্যুর হাত থেকে মুক্তি দেব! মৃত্যু, তোমার রোগগুলি কোথায়? কবর, কোথায় তোমার বিনষ্ট করার ক্ষমতা? আমি শোক প্রকাশ করার কোন কারণই দেখি না! 15 ইস্রায়েল তার ভাযেদের সঙ্গে বড় হয়েছে| কিন্তু পূর্ব দিক থেকে একটি শক্তিশালী ঝড় আসবে আর মরুভূমির দিক থেকে প্রভুর ঝড় বইবে| তখন ইস্রায়েলের কুযো শুকিয়ে যাবে| তার জলের ঝর্ণাগুলি শুকিয়ে যাবে| ইস্রায়েলের কোষাগার থেকে যা কিছু মূল্য়বান তার সব কিছুই বাতাস উড়িযে নিয়ে যাবে| 16 শমরিয়া অবশ্যই শাস্তি পাবে| কারণ সে তার ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গেছে| ইস্রায়েল জাতি তরবারির সাহায্যেই নিহত হবে| তাদের সন্তানদের টুকরো টুকরো করে ছিন্ন করে দেওয়া হবে| তাদের গর্ভবতী মেয়েদের ছিঁড়ে ফেলা হবে|”
1 ইস্রায়েল তোমাদের পতন হয়েছে এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তোমরা পাপ করেছো| সেজন্য তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসো| 2 তুমি য়ে কথাগুলো বলবে তার সম্বন্ধে চিন্তা কর এবং প্রভুর কাছে ফিরে এসো| তাঁকে বলো,“আমাদের পাপ দূর করে দিন| আমাদের ভালো কথাগুলি গ্রহণ করুন| উত্সর্গ হিসেবে আমরা আমাদের ওষ্ঠ দিয়ে আপনাকে প্রশংসা বাক্য় নিবেদন করব| 3 “অশূর আমাদের রক্ষা করতে সক্ষম হবে না| আমরা যুদ্ধের ঘোড়ায় চাপব না| য়ে জিনিসগুলো আমরা নিজেদের হাতে তৈরি করেছি সেগুলোকে আমরা ‘আমাদের ঈশ্বর’ বলব না| কেন? কারণ আপনিই একমাত্র সেই জন যিনি অনাথদের প্রতি কৃপা দেখান| কেবলমাত্র আপনিই আমাদের রক্ষা করতে পারেন|” 4 প্রভু বলেন, “আমাকে পরিত্যাগ করবার জন্য আমি তাদের ক্ষমা করব| য়েহেতু আমি রুদ্ধ হওয়া থেকে বিরত হয়েছি তাই আমি তাদের মুক্তমনে ভালোবাসব| 5 আমি ইস্রায়েলের কাছে শিশিরের মতো হব| ইস্রায়েল লিলির মতো প্রস্?ুটিত হবে| সে লিবানোনের সিডার গাছের মতো হবে| 6 তার শিকড়গুলি বাড়বে এবং তাকে একটি সুন্দর জলপাই গাছের মত দেখাবে| লিবানোনের সিডার গাছগুলো থেকে য়ে সুন্দর গন্ধ আসে সেও সে রকম সুন্দর গন্ধ হবে| 7 ইস্রায়েলের জনসাধারণ আবার আমার আশ্রয়ে থাকবে| তারা শস্যের মত বাড়বে| তারা দ্রাক্ষা গাছের মত মুকুলিত হবে| তারা লিবানোনের মদের মত হবে|” 8 “ইফ্রয়িম, মূর্ত্তিগুলো নিয়ে আমার আর বেশী কিছু করবার থাকবে না| আমিই সেই ‘এক’ যিনি তোমাদের প্রার্থনার উত্তর দেন| আমিই সেই য়ে তোমাদের ওপর নজর রাখে| আমি সেই ফার গাছের মত য়েটা চির সবুজ| আমার কাছ থেকেই তোমাদের ফল আসে|” 9 একজন জ্ঞানী ব্যক্তি এই বিষয়গুলো বুঝতে পারছে| এক জন চটকদার মানুষকে অবশ্যই এই বিষয়গুলি শিখতে হবে|প্রভুর পথ সকল সঠিক| ভালো লোকরা সেই পথেই বাঁচবে| পাপীরা তার দ্বারাই মারা যাবে|
1 পথূয়েলের পুত্র যোয়েলের কাছে প্রভুর এই বার্তা: 2 হে প্রবীণেরা, কথাটা শোন! দেশে বসবাসকারী সকলে শোন| তোমাদের জীবন কালে এর আগে কি কখনও এই রকম ঘটনা ঘটেছে? না! তোমাদের পিতৃপুরুষদের সময়ও কি এই রকম কোনো ঘটনা ঘটেছে? না! 3 তোমাদের সন্তানদের এই সম্বন্ধে বলো| তোমাদের সন্তানরা তাদের সন্তানদের বলুক | আবার তাদের সন্তানরা তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে বলুক| 4 কাটুরে পঙ্গপাল যা রেখে গেছে তা ঝাঁকের পঙ্গপাল খেয়ে গেছে| আর ঝাঁকের পঙ্গপাল যা রেখে গেছে তা লাফানে পঙ্গপাল খেয়ে গেছে| আর লাফানে পঙ্গপাল যা রেখে গেছে তা ধ্বংসকারী পঙ্গপাল খেয়ে গেছে| 5 ওহে মাতালরা ওঠ, কাঁদো! ওহে মদ্যপায়ীরা, মিষ্টি দ্রাক্ষারসের জন্য হা-হুতাশ কর! কারণ তা তোমাদের মুখ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে| 6 এক বিশাল ও শক্তিশালী দেশ আমার দেশকে আক্রমণ করেছে| সেখানে অগনিত সৈন্য ছিল| তাদের অস্ত্রগুলি সিংহের দাঁতের মত ধারালো এবং সিংহের চোয়ালের মত শক্তিশালী| 7 এটি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেত্র ও ডুমুর গাছগুলো ধ্বংস করেছে| এটি ডুমুর গাছের ছাল ছাড়িয়ে নিয়ে তা ফেলে দিয়েছে, তাই তার শাখাগুলি সাদা হয়ে গেছে| 8 যার যুবক স্বামী মারা গেছে, সেই যুবতী মহিলার মত চটের পোষাক পরে কাঁদো| 9 প্রভুর মন্দিরে আর নৈবেদ্য ও পানীয় উত্সর্গ করা হয় না| তাই যাজকগণ! প্রভুর দাসরা, শোক প্রকাশ করো! 10 ক্ষেত্রগুলি বিনষ্ট হয়ে গেছে, মাটি শুকিয়ে গেছে| সমস্ত শস্য নষ্ট হয়ে গেছে| নতুন দ্রাক্ষারস শুকিয়ে গেছে| টাট্কা অলিভ তেল শেষ হয়ে গেছে| 11 ওহে চাষীরা তোমরা দুঃখ কর! দ্রাক্ষা ক্ষেত্রের চাষীরা হাহাকার কর! গম ও যবের জন্য কাঁদো! কারণ ক্ষেতের ফসল ধ্বংস হয়ে গেছে| 12 দ্রাক্ষালতা শুকিয়ে গেছে| ডুমুর গাছ মারা গেছে| ডালিম, তাল ও আপেল, এমনকি ক্ষেতের সমস্ত গাছ শুকিয়ে গেছে| সত্যি লোকদের মধ্যে য়ে সুখ ছিল তা শুকিয়ে গেছে| 13 হে যাজকগণ, চটের পোষাক পরে উচ্চস্বরে কাঁদো| তোমরা যারা বেদীর পরিচারকরা উচ্চস্বরে কাঁদো| হে ঈশ্বরের দাসরা চটের পোশাক পরে ঘুমিযে থাকো| কারণ ঈশ্বরের মন্দিরে উত্সর্গ করার জন্য কোন শস্য নৈবেদ্য ও পেয় নৈবেদ্য থাকবে না| 14 উপবাসের জন্য একটি বিশেষ সময় ঘোষণা করো| বিশেষ সভার জন্য লোকদের একত্র করো| দেশের সমস্ত লোক ও নেতাদের একত্র করো| তাদের সবাইকে তোমার প্রভু ঈশ্বরের মন্দিরে নিয়ে এস এবং সাহায্যের জন্য প্রভুর কাছে খুব জোরে কান্নাকাটি কর| 15 বিমর্ষ হও! কারণ প্রভুর সেই বিশেষ দিন সন্নিকট| সেই সময় থেকে ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে আক্রমণের ন্যায় শাস্তি আসবে| 16 একি সুস্পষ্ট নয় য়ে আমাদের কোন খাদ্য নেই? এটা কি সুস্পষ্ট নয় য়ে আনন্দ এবং সুখ আমাদের প্রভুর মন্দির থেকে চলে গিয়েছে? 17 আমাদের শস্য বীজ মাটিতে পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে| গুদামগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| আমাদের গোলাবাড়িগুলো শূন্য এবং ভেঙ্গে পড়েছে কারণ আমাদের শস্য শুকিয়ে গেছে এবং মৃত| 18 পশুগুলো কাঁদছিল! গরুর পাল ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে| কারণ তাদের খাবার ঘাস নেই| এমনকি মেষেরাও কষ্ট পাচ্ছে কারণ আমরা পাপ কার্য়্য়ের জন্য অপরাধী| 19 প্রভু আমি সাহায্যের জন্য তোমায় ডাকছি, কারণ প্রান্তরের চারণভূমি আগুনে পুড়ে গেছে এবং খোলা মাঠের সমস্ত গাছ তাতে ঝলসে গেছে| 20 এমনকি পশুরাও তোমার কাছে কাঁদবে কারণ জলের ঝর্ণাগুলো শুকিয়ে গেছে আর আগুন সবুজ ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ে তাদের মরুভূমিতে পরিণত করেছে|
1 সিয়োনে শিঙা বাজাও| আমার পবিত্র পর্বতে জোরে চিত্কার করো| দেশের সমস্ত বাসিন্দারা ভয়ে কেঁপে উঠুক| কারণ প্রভুর দিন আসছে এবং তা সন্নিকট| 2 সেটা এক অন্ধকার, বিষণ্ন দিন হবে| এটা অন্ধকার এবং মেঘলা দিন হবে| অন্ধকার য়ে ভাবে পর্বতে ছেয়ে যায় সেই ভাবে বিশাল ও শক্তিশালী সৈন্য দেখা যাবে| এর আগে কখনও এমন হয নি| আর এর পরেও এমন হবে না| 3 আগুন তাদের সামনে গ্রাস করবে এবং অগ্নিশিখা তাদের পশ্চাতে জ্বলবে| তাদের সামনের দেশ হবে য়েন এক এদোন উদ্য়ান| কিন্তু তাদের পশ্চাতে দেশ য়েন শূন্য মরুভূমি| কোন কিছুই তাদের এড়িয়ে যাবে না| 4 তাদের দেখতে ঘোড়ার মত| আর যুদ্ধের ঘোড়ার মতো তারা দৌড়ায়| 5 ঐ শোন পর্বতের ওপর তাদের রথের শব্দ| সেই শব্দ খড় জ্বালানো আগুনের শব্দের মতো এবং একটি শক্তিশালী সৈন্য বাহিনীর মত যারা যুদ্ধ করতে আসছে| 6 ঐ সৈন্যদলের সামনে লোকে ভয়ে কাঁপে| তাদের মুখ ভয়ে বিবর্ণ হবে| 7 তারা দ্রুত দৌড়ায় এবং য়োদ্ধাদের মতো তারা প্রাচীরে চড়তে পটু| তারা কুচকাওয়াজ করে সামনে এগিয়ে যায়| তারা তাদের পথ থেকে সরে যায় না| 8 তারা একে অন্যের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে না| প্রত্যেক সৈন্য তার নিজের পথে চলে| এমনকি যদি এক জন সৈন্য আহত হয়ে পড়ে অন্যরা ঠিক ভাবেই কুচকাওয়াজ করে চলে| 9 তারা শহরের মধ্যে দৌড়ে যায়| তারা দ্রুত প্রাচীরের উপর ওঠে| ঘরের মধ্যে উঠে পড়ে| জানালা দিয়ে চোরের মত ঢুকে পড়ে| 10 তাদের সামনে য়েন পৃথিবী ও আকাশ কেঁপে ওঠে| সূর্য় ও চাঁদ অন্ধকার হয়ে যায়| তারারা উজ্জ্বলতা প্রকাশ বন্ধ করে| 11 প্রভু নিজে তার সৈন্যদের চিত্কার করে ডাকছেন| তাঁর শিবির খুব বড়| সত্যি সেই সৈন্যরা তাঁর আদেশ মানে| তারা খুবই শক্তিশালী| প্রভুর দিন হবে সত্যি তীব্র ও ভয়ানক; কে তা সহ্য করতে পারে? 12 প্রভু বললেন, “এখন তোমরা সর্বান্তঃকরণে আমার কাছে ফিরে এস| উপবাস, রোদন ও বিলাপ করতে করতে এস! 13 আর তোমাদের হৃদয় ছিন্ন কর, তোমাদের বস্ত্র নয়|” তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছেই ফিরে এস| কারণ তিনি কৃপাময|তিনি চট করে রেগে ওঠেন না| তিনি মহা দয়াময়| হয়তো তিনি য়ে অমঙ্গলের পরিকল্পনা করেছিলেন সে বিষয়ে তাঁর মন পরিবর্তন করবেন| 14 কে জানে, প্রভু হয়তো তাঁর মন পরিবর্তন করতে পারেন| এমনকি তিনি হয়তো তোমাদের জন্য পশ্চাতে আশীর্বাদ রেখেও য়েতে পারেন| তাহলে তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলি ও পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে সক্ষম হবে| 15 সিয়োনে শিঙা বাজাও| উপবাসের দিন ঠিক কর| বিশেষ সভার দিন ঘোষণা কর| 16 লোকদের একত্র কর| বিশেষ সভা ডাক| বয়স্ক লোকদের একত্র কর| শিশু ও বাচ্চাদের একত্র কর| বর ও কনেরা তাদের শয়্য়া ঘর থেকে বেরিয়ে আসুক| 17 বারান্দা ও বেদীর মধ্যে যাজকরা, প্রভুর দাসেরা কাঁদুক| তাদের সবাই বলুক: “প্রভু তোমার লোকদের প্রতি কৃপা কর| তোমার লোকদের লজ্জায পড়তে দিও না| অন্য দেশের লোকদের তোমার লোকদের নিয়ে ঠাট্টা করতে দিও না| অন্য দেশের লোকদের হেসে বলতে দিও না, ‘ওদের ঈশ্বর কোথায?”‘ 18 তখন প্রভু তাঁর দেশের জন্য ঈর্ষাকাতর হবেন এবং তাঁর লোকদের দয়া করবেন| 19 তখন প্রভু তাঁর লোকদের সঙ্গে কথা বললেন, এবং বললেন, “আমি তোমাদের কাছে শস্য দ্রাক্ষারস ও অলিভ তেল পাঠাবো এবং তোমরা প্রচুর পাবে ও তাতে তোমরা সন্তুষ্ট হবে| আমি আর অন্য দেশকে তোমাদের কখনও অপমান করতে দেব না| 20 আমি উত্তর দেশীয লোকদের তোমাদের কাছ থেকে বহু দূরে পাঠাব এবং আমি তাদের শুষ্ক ও ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে নির্বাসনে পাঠাব| আমি তাদের কিছুকে পূর্বদিকের সমুদ্রে এবং কিছুকে পশ্চিমের ভূমধ্যসাগরে পাঠাব| তারা পচে যাবে এবং তাদের পূর্ত্তিগন্ধ ওপরে উঠবে, কারণ তারা অনেক ক্ষতি করেছে!” 21 হে দেশ, ভয় কোরো না| আনন্দ অনুষ্ঠান কর কারণ প্রভু মহত্ মহত্ কাজ করবেন| 22 মাঠের পশুরা ভয় পেয়ো না কারণ প্রান্তরের ভূমিতে আবার ঘাস জন্মাবে| গাছে আবার ফল ধরবে, এবং ডুমুর ও দ্রাক্ষা গাছে আবার উত্তম ফল হবে| 23 সিয়োনের লোকরা তোমরা প্রভু ঈশ্বরেতে আনন্দ অনুষ্ঠান কর| কারণ তিনি তাঁর উদারতার চিহ্ন হিসাবে বৃষ্টি বর্ষাবেন| তা ছাড়াও তিনি আগের মতোই তোমাদের আগে আগে বৃষ্টি ও শেষের দিকে বৃষ্টি দেবেন| 24 আর ঢেঁকির মেঝেগুলি শসে ভরে যাবে, অলিভ তেলে ও দ্রাক্ষারসে পিপেগুলো ভরে উপচে পড়বে| 25 “আমি তোমাদের বিরুদ্ধে য়ে সমস্ত ঝাঁকের পঙ্গপাল, লাফানে পঙ্গপাল, ধ্বংসকারী পঙ্গপাল, এবং কাটুরে পঙ্গপাল অর্থাত্ আমার মহা সৈন্যরা পাঠিয়েছিলাম যারা সেই বছর তোমাদের শস্য ধ্বংস করেছে তা আমি পরিশোধ করব| 26 তোমরা প্রচুর খাবার খেয়ে তৃপ্ত হবে এবং প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের নামের প্রশংসা করবে| কারণ তিনি তোমাদের জন্য অলৌকিক চমত্কার কাজ করেছেন| প্রভু বলেন, আমার লোকরা আর কখনও লজ্জিত হবে না| 27 আর তোমরা জানবে য়ে আমি (প্রভু) ইস্রায়েলের মধ্যে বাস করি| আমিই তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর আর কোন ঈশ্বর নেই| আমার লোকরা আর কখনও লজ্জিত হবে না|” 28 “এখন থেকে আমি আমার আত্মা সবার মধ্যে ঢেলে দেব| এর ফলে তোমাদের ছেলেমেয়েরা ভাববাণী বলবে| বয়স্ক লোকরা স্বপ্ন দেখবে আর তোমাদের কণিষ্ঠরা দর্শন পাবে| 29 আর সেই সময় আমি এমনকি, তোমাদের দাসদাসীদের ওপরও আমার আত্মা ঢেলে দেব| 30 আমি আকাশে ও পৃথিবীতে চিহ্ন দেখাব| রক্ত, আগুন ও ধোঁয়ার স্তম্ভ দেখা যাবে| 31 সূর্য় অন্ধকার হয়ে যাবে, চাঁদ রক্তের মত লাল হয়ে যাবে| আর তারপর প্রভুর সেই মহান ও ভয়ঙ্কর দিন আসবে! 32 আর যারাই প্রভুর নাম ডাকে তারা রক্ষা পাবে| কারণ প্রভুর বাক্যানুসারে ঐ সমস্ত লোক সিয়োন পর্বতে ও জেরুশালেমে বেঁচে থাকবে| হ্যাঁ, ঐ সমস্ত বেঁচে যাওয়া লোক, যাদের প্রভু ডেকেছেন তারাই ফিরে আসবে|
1 “সেই সময় আমি যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের বন্দী দশা হতে ফিরিয়ে আনব| 2 আমি সমস্ত দেশকে একত্র করে যিহোশাফটের উপত্যকায় নিয়ে আসব| সেখানে আমি তাদের বিচার করব| সেই দেশের লোকরা আমার ইস্রায়েলের লোকদের ছিন্ন ভিন্ন করেছিল| তারা তাদের অন্য দেশের মধ্যে বাস করতে বাধ্য করেছিল| সেই জন্য আমি সেইসব দেশকে শাস্তি দেব| ঐসব দেশ আমার দেশকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করেছিল| 3 তারা আমার লোকদের জন্য গুলিবাট ব্যবহার করেছিল| তারা এক বেশ্যার জন্য ছেলেকে এবং পান করবার জন্য দ্রাক্ষারসের বিনিময়ে মেয়েকে বিয়ে করেছিল| এমন কি তারা ... 4 “হে সোর ও সীদোন এবং পলেষ্টীয়দের সমস্ত অঞ্চল আমার প্রতি তোমাদের মনোভাব কি? কোন কিছুর জন্য কি তোমরা আমায শাস্তি দিচ্ছ? তোমরা কি মনে কর আমাকে আঘাত করার জন্য কিছু করতে যাচ্ছ? শীঘ্রই আমি তোমাদের কাজের ফল হিসেবে তোমাদের শাস্তি দেব| 5 তোমরা আমার রূপো ও সোনা নিয়ে গিয়েছ এবং আমার অতি উত্কৃষ্ট জিনিসগুলি তোমাদের মন্দিরে নিয়ে গিয়েছ| 6 “তোমরা যিহূদার ও জেরুশালেমের লোকদের গ্রীকদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছ, য়েন তারা তাদের দেশ থেকে বহু দূরে নিয়ে য়েতে পারে| 7 তাদের য়ে য়ে স্থান বিক্রি হয়ে গেছে আমি তাদের সেখানে থেকে ফিরিযে আনব এবং আমি তোমাদের খারাপ কাজের জন্য শাস্তি দেব| 8 আমি তোমাদের সন্তানদের যিহূদার লোকদের কাছে বিক্রি করব এবং তারা বহু দূরের শিবায়ীয় লোকদের কাছে তাদের বিয়ে করবে|” প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 9 তোমরা জাতিগণের কাছে এই কথা ঘোষণা কর: তোমরা যুদ্ধের জন্য নিজেদের প্রস্তুত কর! বলবান সৈন্যদের জাগিয়ে তোল! সমস্ত য়োদ্ধা যুদ্ধে প্রবেশ করুক| 10 তোমাদের লাঙ্গল ভেঙ্গে খগ তৈরি কর এবং কাস্তে ভেঙ্গে বর্শা তৈরি কর| দুর্বল য়ে, সেও বলুক, “আমি এক জন বলবান য়োদ্ধা|” 11 হে চারি দিকের জাতিগণ, তোমরা তাড়াতাড়ি এস এবং এখানে এসে জড়ো হও! হে প্রভু তোমার বলবান সৈন্যদের আনো! 12 জাতিগণ জেগে ওঠ! যিহোশাফটের উপত্যকায় এস! আমি সেখানে বসে চারি দিকের জাতির বিচার করব! 13 কাস্তে লাগাও কারণ শস্য পাকছে! এস দলন কর কারণ দ্রাক্ষা মাড়বার কুণ্ড পূর্ণ! পিপে ভরে উপচে পড়ছে কারণ তাদের দুষ্টতা মহান| 14 দণ্ডাজ্ঞার উপত্যকায় প্রচুর লোকের ভীড় কারণ দণ্ডাজ্ঞার উপত্যকায় প্রভুর বিশেষ দিন এগিয়ে আসছে| 15 সূর্য় ও চন্দ্র অন্ধকার হয়ে যাবে, আকাশের নক্ষত্রও আর আলো দেবে না| 16 আর প্রভু ঈশ্বর সিয়োন থেকে গর্জন করবেন এবং তিনি জেরুশালেম থেকেও চিত্কার করবেন| ফলে আকাশ ও পৃথিবী কেঁপে উঠবে| কিন্তু প্রভু ঈশ্বর তাঁর লোকদের পক্ষে এক নিরাপদ আশ্রয় এবং তিনিই ইস্রায়েল সন্তানদের পক্ষে দৃঢ় দুর্গ হবেন| 17 “তখন তোমরা জানবে য়ে আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, আমি আমার পবিত্র পর্বত সিয়োনে বাস করি| আর জেরুশালেম পবিত্র হবে| বিদেশীরা আর তার মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করবে না|” 18 “সেই দিনে পর্বত থেকে মিষ্ট দ্রাক্ষারস ঝরে পড়বে এবং উপপর্বত থেকে দুধের স্রোত বইবে| যিহূদার সমস্ত শূন্য নদী জলে পূর্ণ হয়ে বইবে| প্রভুর মন্দির হতে এক উত্স বের হবে, যা আকশিয়া উপত্যকাকে জল য়োগাবে| 19 মিশর ধ্বংস স্থান হবে এবং ইদোম ধ্বংসিত প্রান্তরে পরিণত হবে| কারণ তাদের নিষ্ঠুরতা যিহূদার লোকদের বিরুদ্ধে দেখানো হয়েছে| তারা নির্দোষ লোকদের তাদের দেশেই হত্যা করেছিল| 20 কিন্তু যিহূদাতে সর্বদাই লোকে বাস করবে, লোকে বহু বংশ পরম্পরায় জেরুশালেমে বাস করবে| 21 ওই লোকরা আমার লোকদের হত্যা করেছিল, তাই সত্যি সত্যিই আমি তাদের লোকদের শাস্তি দেব! প্রভু ঈশ্বর সিয়োনে বাস করবেন!
1 আমোষের বার্তা| তকোয় শহরে আমোষ নামে একজন মেষপালক ছিলেন| উষিয় যখন যিহূদার রাজা ছিলেন এবং যোয়াশের পুত্র যারবিয়াম যখন ইস্রায়েলের রাজা ছিলেন সেই সময়ে আমোষ ইস্রায়েল সম্পর্কে দর্শন পেয়েছিলেন| ঘটনাটা ভূমিকম্প হবার দু’বছর আগেকার কথা| 2 আমোষ বললেন: সিয়োনে প্রভু সিংহের মতো গর্জন করবেন| জেরুশালেম থেকে তাঁর কণ্ঠের উচ্চস্বর গর্জিত হবে| মেষপালকদের সবুজ তৃণভূমি শুকিয়ে বাদামী হয়ে যাবে| এমনকি কর্ম্মিলের শিখর শুকিয়ে যাবে| 3 প্রভু এই কথাগুলো বলেন: “আমি অবশ্যই দম্মেশকবাসীদের তাদের বহু দণ্ডার্হ অপরাধের জন্য শাস্তি দেব| কিন্তু কেন? কারণ তারা লোহার তৈরী শস্য মাড়াইয়ের যন্ত্র দিয়ে গিলিয়দকে মর্দন করেছিল| 4 সেই জন্য আমি হসায়েলের বাড়ীতে (অরাম) আগুন লাগিয়ে দেব এবং সেই আগুন বিনহদদের রাজপ্রাসাদগুলিকে ধ্বংস করবে| 5 “তাছাড়াও, আমি দম্মেশকের গেটের শক্ত শিকগুলো ভাঙব| আবনের উপত্যকাতে য়ে ব্যক্তি সিংহাসনে বসে আছে তাকে আমি সরিয়ে দেব| বৈত্-এদনে য়ে রাজা রাজদণ্ড ধরে আছে তাকে আমি নিয়ে চলে যাব| অরামের লোকরা পরাস্ত হবে এবং জনসাধারণ তাদের কীর রাজ্যে নিয়ে যাবে|” প্রভু ঐ কথাগুলোই বলেছিলেন| 6 প্রভু এই কথাটি বলেন: “আমি সত্যিই ঘসাবাসীদের তাদের বহু অন্যায় কাজের জন্য শাস্তি দেব| কেন? কারণ তারা একটি দেশের সমস্ত লোককে নিয়েছিল এবং তাদের এীতদাস হিসাবে ইদোমে পাঠিয়েছিল| 7 সে জন্যে আমি ঘসার দেওয়ালে আগুন পাঠাব| এই আগুন ঘসার উঁচু মিনার ধ্বংস করবে| 8 এবং আমি অস্দোদের সিংহাসনে য়ে ব্যক্তি বসে আছে তাকে সরিয়ে দেব| অস্কিলোনে য়ে রাজাটি রাজদণ্ড ধরে আছে তাকে আমি নিয়ে চলে যাব| আমি ইএোণর সাধারণ মানুষদের শাস্তি দেব| তখন পলেষ্টীয়দের মধ্যে যারা এখনও পর্য়ন্ত জীবিত অবস্থায় বেঁচে আছে তারা মরবে|” প্রভু ঈশ্বর ঐ কথাগুলো বলেছিলেন| 9 প্রভু এই কথাগুলো বলছেন: “আমি অবশ্যই সোরের লোকদের তাদের বহু দণ্ডার্হ অপরাধের জন্য শাস্তি দেবো| কেন? কারণ তারা একটি সমগ্র জাতিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল এবং এীতদাস হিসেবে তাদের ইদোমে পাঠিয়েছিল| তারা তাদের ভাইদের (ইস্রায়েল) সঙ্গে মিলিত হয়ে য়ে চুক্তি করেছিল তা তারা মনে রাখেনি| 10 সে জন্যে আমি সোরের দেওয়ালে আগুন দেব| সেই আগুন সোরের রাজপ্রাসাদগুলিকে ধ্বংস করবে|” 11 প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন: “আমি অবশ্যই ইদোমের লোকদের তাদের বহু দণ্ডার্হ অপরাধের জন্য শাস্তি দেব| কেন? কারণ ইদোম তরবারি নিয়ে তার ভাইদের (ইস্রায়েল) পেছনে তাড়া করে ছাটে ছিল| ইদোম কোন কৃপা দেখায়নি| ইদোমের রোধ সারা জীবন ধরে অব্যাহত ছিল| বন্য পশুর মত ইস্রায়েলকে সে কেবল ছিঁড়েই চলেছে| 12 সে জন্য আমি তৈমনে আগুন দেব| সেই আগুন বস্রারের উঁচু মিনারগুলো ধ্বংস করবে|” 13 প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন: “আমি অবশ্যই অম্মোনের লোকদের তাদের বহু দণ্ডার্হ অপরাধের জন্য শাস্তি দেব| কেন? কারণ তারা গিলিয়দে গর্ভবতী নারীদের হত্যা করেছিল| অম্মোনবাসীরা এই কাজগুলো করেছিল এই জন্য যাতে তারা তাদের রাজ্য নিতে পারে এবং তাদের রাজ্যকে আরো বড় করতে পারে| 14 সে জন্য আমি রব্বার দেওয়ালে আগুন দেব| সেই আগুন রব্বার উঁচু মিনার ধ্বংস করবে| ঘূর্ণী ঝড়ের মত তাদের রাজ্যের মধ্যে বিপদ এসে ঢুকবে| 15 তখন তাদের রাজা এবং নেতাদের নির্বাসনে নিয়ে যাওয়া হবে| তাদের সবাইকে এক সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হবে|” প্রভু এই কথাগুলো বলেছিলেন|
1 প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন: “আমি অবশ্যই মোযাবের লোকদের তাদের বহু দণ্ডার্হ অপরাধের জন্য শাস্তি দেব| কেন? কারণ মোয়াব ইদোমের রাজার হাড়গুলোকে পুড়িয়ে চুন করে দিয়েছিল| 2 সে জন্য আমি মোযাবে আগুন জ্বালাব এবং সেই আগুন করিযোতের উঁচু মিনার ধ্বংস করবে| সেখানে ভয়ঙ্কর চিত্কার এবং শিঙার শব্দ শোনা যাবে এবং মোয়াব মারা যাবে| 3 সে জন্য আমি মোযাবের রাজাদের শেষ করে দেব এবং মোযাবের সব নেতাদেরও খুন করব|” প্রভু এই কথাগুলো বলেছিলেন| 4 প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন: “আমি অবশ্যই যিহূদাকে তাদের বহু দণ্ডার্হ অপরাধের জন্যে শাস্তি দেব| কেন? কারণ তারা প্রভুর আদেশ মান্য করতে অস্বীকার করেছিল| তারা তাঁর আদেশ পালন করেনি| তাদের পূর্বপুরুষরা মিথ্যা বিশ্বাস করেছিল| এবং ওই একই মিথ্যার জন্য যিহূদাবাসীরা ঈশ্বরকে অনুসরণ করা ছেড়েছিল| 5 তাই আমি যিহূদাতে আগুন লাগাব এবং সেই আগুন জেরুশালেমের উঁচু মিনারগুলো ধ্বংস করবে|” 6 প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন: “আমি অবশ্যই ইস্রায়েলকে তাদের বহু দণ্ডার্হ অপরাধের জন্য শাস্তি দেব| কেন? কারণ তারা সামান্য রূপোর জন্য ভালো এবং নির্দোষ লোকদের বিয়ে করেছিল| এক জোড়া জুতোর বদলে তারা গরীব লোকদের বিয়ে করেছিল| 7 তারা ওই গরীব লোকদের মাটির ওপর উপুড় করে ফেলে দিয়ে তার ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছিল| তারা সাধারণ লোকদের কষ্টের কথা শোনাও বন্ধ করেছিল| একই স্ত্রীলোকের সঙ্গে পিতা ও পুত্রের য়ৌন সম্পর্ক ছিল| তারা আমার পবিত্র নাম ধ্বংস করেছিল| 8 তারা গরীব লোকদের কাছ থেকে জামাকাপড় নিচ্ছে এবং তারা বেদীতে পূজা করার সময় ওই কাপড়-চোপড়ের ওপরেই বসছে| তারা গরীব লোকদের টাকা ধার দিয়েছে| এবং সঙ্গে সঙ্গে তাদের কাপড়-চোপড়গুলো বন্ধক হিসাবে নিয়ে নিয়েছে| তারা সাধারণ লোকদের জরিমানা দিতে বাধ্য করেছিল| এবং সেই টাকা দিয়ে তাদের দেবতাদের মন্দিরে বসে নিজেরা পান করার জন্য দ্রাক্ষারস কিনেছিল| 9 “কিন্তু আমিই তাদের সামনে ইমোরীয়দের ধ্বংস করেছিলাম| ইমোরীযরা এরস গাছের মতোই দীর্ঘদেহী ছিল| তারা ওক গাছের মতোই শক্তিশালী ছিল| কিন্তু আমি তাদের ওপরকার ফল এবং নিচেকার শিকড়গুলো নষ্ট করে দিয়েছিলাম| 10 “আমিই সেই ঈশ্বর যিনি তোমাদের মিশর দেশ থেকে নিয়ে এসেছিলাম| 40 বছর ধরে আমি তোমাদের মরুভূমির মধ্য দিয়ে পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম| ইমোরীয়দের দেশ অধিকার করতে আমি তোমাদের সাহায্য করেছিলাম| 11 আমি তোমাদের ছেলেদের কয়েক জনকে ভাব্বাদী বানিয়েছিলাম| আমি তোমাদের কিছু তরুণদের নাসরীয় করেছি| ইস্রায়েলের লোকরা, শোনো, সত্যি কথাটা হচ্ছে এই|” প্রভু এই কথাগুলো বলেছিলেন| 12 “কিন্তু তোমরা নাসরীয়দের দ্রাক্ষারস পানে আসক্ত করেছিলে| তোমরাই ভাব্বাদীদের ভাব্বাণী করতে বিরত করেছিলে| 13 তোমরা য়েন আমার কাছে ভারী বোঝার মতো| অতিরিক্ত খড় বোঝাই মালবাহী গাড়ির মতোই আমি ভারের চাপে নীচু হয়ে গিয়েছি| 14 কোন মানুষই পালাতে পারবে না- ক্ষিপ্রতম দৌড়বীরও না| শক্তিশালী লোকরা আর শক্তিশালী থাকবে না| সৈন্যরা তাদের নিজেদের রক্ষা করতে সমর্থ হবে না| 15 তীর-ধনুকধারী মানুষও রক্ষা পাবে না| দ্রুততম মানুষেরাও পালাতে পারবে না| ঘোড়ায় চড়া মানুষও পালিয়ে বাঁচতে পারবে না| 16 সেই সময়, খুব সাহসী সৈন্যরা পর্য়ন্ত পালিয়ে যাবে| এমনকি তারা জামা-কাপড় পর্য়ন্ত পরতে সময় পাবে না|” প্রভু এই কথাগুলো বলেছিলেন|
1 ইস্রায়েলবাসীরা, এই বার্তাটি শোন! ইস্রায়েল, তোমাদের জন্যই প্রভু এই কথাগুলো বলেছিলেন| এই বার্তাটি তোমাদের সব পরিবারের (ইস্রায়েল) জন্যেই যাদের আমি মিশর দেশ থেকে নিয়ে এসেছিলাম| 2 “পৃথিবীতে অনেক পরিবার আছে| কিন্তু বিশেষভাবে জানবার জন্য একমাত্র তোমার পরিবারকেই আমি বেছে নিয়েছিলাম| এবং তোমরা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিলে| সে জন্য আমি তোমাদের সব পাপ কাজের জন্য শাস্তি দেব|” 3 একমত না হলে দুজন লোক কখনোই হাঁটতে পারবে না! 4 একটি পশুকে ধরার পরেই একটি যুব সিংহ অরণ্যে গর্জন করে| যদি একটি সিংহ তার গুহায় গর্জন করে তার মানে হল সে কোন শিকার ধরেছে| 5 মাঠের মধ্যে বিছানো জালে যদি কোন খাদ্য না থাকে, তবে কোন পাখী উড়ে এসে তার মধ্যে পড়বে না| জালের মুখ তখনই বন্ধ হবে, যখন তাতে কিছু ধরা পড়বে| 6 যদি শিঙায সতর্ক বাঁশী বেজে ওঠে তখনই কি মানুষ সত্যিই ভয়ে কাঁপতে থাকবে না? যদি শহরে বিপদ আসে, তখন বুঝতে হবে প্রভু তা ঘটিযেছেন| 7 আমার প্রভু, আমার সদাপ্রভু কিছু করার জন্য মনস্থির করেছেন| কিন্তু কিছু কাজ করার আগে, তিনি তাঁর সেবক ভাব্বাদীদের তাঁর পরিকল্পনাগুলি না বলে থাকবেন না| 8 যদি কোন সিংহ গর্জন করে, তবে লোকে ভয় পাবে| যদি প্রভু কথা বলেন তবেই ভাব্বাদীরা ভাব্বাণী করবে| 9 অস্দোদের এবং মিশরের প্রাসাদের ওপরে যাও এবং এই বার্তাটি ঘোষণা কর: “শমরিয়ার পর্বতে চলে এস| সেখানে তুমি বিরাট বিশৃঙ্খলা দেখতে পাবে| কারণ লোকরা জানেনা কি করে সঠিকভাবে জীবনযাপন করতে হয়| তারা অন্য লোকদের প্রতি নিষ্ঠুর ছিল| তারা অন্য লোকদের কাছ থেকে জিনিস নিয়ে নিত এবং ওই জিনিসগুলো তাদের প্রাসাদে লুকিয়ে রাখত| জোর করে কেড়ে নেওয়া জিনিসগুলোতেই তাদের কোষাগার পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল|” 10 11 সেই জন্য প্রভু বলেছেন, “এক শএু সেই দেশে আসবে| সেই শএু এসে তোমাদের শক্তি হরণ করবে| তোমাদের উঁচু মিনারে তোমরা য়েসব জিনিস লুকিয়ে রেখেছো তা সে নিয়ে যাবে|” 12 সে জন্য প্রভু বলেছেন,“একটি সিংহ কোন মেষকে আক্রমণ করলে এবং একজন মেষপালক মেষটিকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে মেষপালকটি মেষের কেবলমাত্র কিছু অংশই বাঁচাতে পারবে| সে হয়ত সিংহের মুখ থেকে মেষের দুটো পা অথবা কানের একটি অংশ টেনে নিতে পারবে| একই ভাবে, ইস্রায়েলের অধিকাংশ লোকই রক্ষা পাবে না| শমরিয়ায যারা বাস করছে তারা হয়ত বিছানার কেবলমাত্র একটা কোণ রক্ষা করতে পারবে, অথবা শয়্য়ার চাদরের এক টুকরো|” 13 আমার সদাপ্রভু, প্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এই কথাগুলো বলেছেন: “এই বিষয়গুলি সম্বন্ধে যাকোবের পরিবারকে (ইস্রায়েল) সতর্ক করে দাও| 14 ইস্রায়েল পাপ কাজ করছে এবং আমি তাদের পাপ কাজের জন্য শাস্তি দেব| যখন আমি তা করব তখন বৈথেলের বেদীগুলিও ধ্বংস করব| বেদীর শৃঙ্গগুলি কেটে দেওয়া হবে এবং সেগুলো মাটিতে পড়ে যাবে| 15 আমি শীতকালের বাড়ীর সঙ্গে সঙ্গে গরমকালের বাড়ীও ধ্বংস করব| হাতির দাঁতের বাড়ীগুলিও ধ্বংস হবে| বহু বাড়ী ধ্বংস হবে|” প্রভু ওই কথাগুলি বলেছিলেন|
1 শমরিয়ার পর্বতে বাশনের য়ে গাভীরা চরে বেড়াচ্ছে তোমরা শোন| শমরিয়ার ধনী নারীদের কথাই বলা হচ্ছে| বাশন য়?র্ন নদীর পূর্বতীরে অবস্থিত একটি জায়গা| এই অঞ্চলের বড় বড় ষাঁড় ও গরু বিখ্যাত| তোমরা গরীবদের আঘাত করছ| তোমরা ওই গরীব মানুষদের সর্বনাশ করছ| তোমরা তোমাদের স্বামীদের বলছ, “আমাদের জন্য কিছু পানীয় আনো|” 2 আমার প্রভু, আমার সদাপ্রভু একটি প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, তিনি তাঁর পবিত্রতার দ্বারা প্রতিশ্রুতি করেছিলেন তোমাদের কাছে বিপদ আসবেই| লোকে আংটার সাহায্যে তোমাদের বন্দী হিসেবে নিয়ে যাবে| তোমাদের সন্তানদের নিয়ে যাবার জন্য তারা বঁড়শি ব্যবহার করবে| 3 তোমাদের শহর ধ্বংস হবে| স্ত্রীলোকরা শহরের দেওয়ালের ফাটল দিয়ে বেরিয়ে নিজেদের ওই মৃত দেহের স্তূপের ওপর নিক্ষেপ করবে|প্রভু এই কথাটি বলেছেন, 4 “বৈথেলে যাও এবং পাপ কর! গিল্গলে গিয়ে আরো বেশী করে পাপ কর| সকালে তোমাদের বলি উত্সর্গ কর| প্রতি তিন দিনের উত্সবের জন্য তোমাদের শস্য়ের এক দশমাংশ নিয়ে এসো| 5 খামির দিয়ে তৈরি কোনো জিনিস দিয়ে ধন্যবাদ উত্সর্গ দাও| প্রত্যেককে স্বেচ্ছা উত্সর্গের কথা বলো| ইস্রায়েল, তুমি ঐ কাজগুলো করতে ভালবাস; সে জন্য যাও এবং সেগুলো কর|” প্রভু এই কথাগুলো বলেছিলেন| 6 আমার কাছে তোমরা যাতে আসো তার জন্য আমি অনেক কাজ করেছিলাম| আমি তোমাদের কোন খাদ্য খেতে দিই নি| তোমাদের কোন শহরেও আর কোন খাবার ছিল না| কিন্তু তোমরা আমার কাছে ফিরে আসো নি|” প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন| 7 “তাছাড়া আমি বৃষ্টিও বন্ধ করেছিলাম- এবং সেটা ফসল তোলার তিন মাস আগেকার কথা| সে জন্য কোন শস্য জন্মায় নি| তখন আমি একটি মাত্র শহরে বৃষ্টি হতে দিয়েছি, কিন্তু অন্য কোন শহরে নয়| দেশের একটি অংশে বৃষ্টি পড়েছিল, কিন্তু দেশের অন্য অংশের জমি খুবই শুকনো হয়ে গিয়েছিল| 8 সে জন্য দুটি অথবা তিনটি শহরের সাধারণ মানুষরা জল পাওয়ার জন্য অন্য শহরে কষ্ট করে গিয়েছিল- কিন্তু সেখানে প্রত্যেক মানুষের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে জল ছিল না| তখনও পর্য়ন্ত তোমরা আমার কাছে সাহায্যের জন্য আসো নি|” প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন| 9 “তোমাদের ফসলগুলো রোদ এবং উত্তাপ দিয়ে আমিই মেরে ফেলেছি| আমি তোমাদের বাগান এবং দ্রাক্ষাক্ষেত ধ্বংস করেছি| পঙ্গপালরা তোমাদের ডুমুর গাছ এবং জলপাই গাছ খেয়ে নিয়েছে| কিন্তু তখনও পর্য়ন্ত তোমরা আমার কাছে সাহায্যের জন্য আসোনি|” প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন| 10 আমি তোমাদের বিরুদ্ধে সংক্রামক ব্যাধি পাঠিয়েছি, মিশরে য়েরকম আমি করেছিলাম| আমি তরবারি দ্বারা তোমাদের যুবকদের হত্যা করেছি| আমি তোমাদের ঘোড়াগুলোকে নিয়ে নিয়েছি| আমি তোমাদের তাঁবুগুলোকে শব দেহের দুর্গন্ধে ভরে দিয়েছিলাম| কিন্তু তখনও পর্য়ন্ত তোমরা সাহায্যের জন্য আমার কাছে আসোনি” প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন| 11 সদোম এবং ঘমোরাকে আমি য়ে ভাবে ধ্বংস করেছিলাম তোমাদেরও সেই রকম ভাবে আমি ধ্বংস করেছিলাম এবং ঐ শহরগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল| তোমরা তখন আগুন থেকে টেনে আনা জ্বলন্ত কাঠের মতোই হয়েছিলে| কিন্তু তখনও পর্য়ন্ত তোমরা আমার কাছে সাহায্যের জন্য ফিরে আসোনি|” প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন| 12 “সে জন্য ইস্রায়েল, আমি তোমার সঙ্গে এই কাজগুলো করব| আমি তোমার জন্য এই কাজটি করব| ইস্রায়েল, তোমার ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করবার জন্য প্রস্তুত হও| 13 আমি কে? আমিই হচ্ছি সেই, য়ে পর্বতগুলোকে তৈরি করেছিলাম| আমি তোমাদের মনগুলোকে সৃষ্টি করেছিলাম| আমি লোকদের শিক্ষা দিয়েছিলাম কি করে কথা বলতে হয়| আমি উষাকে অন্ধকারে পরিবর্তিত করেছি| আমি পৃথিবীর পর্বতগুলোর ওপর দিয়ে হাঁটি| আমি কে? আমার নাম হচ্ছে যিহোবা, সৈন্যদলের ঈশ্বর|”
1 ইস্রায়েলবাসীরা, এই গানটি শোন| এই বিলাপের গানটি তোমাদেরই জন্য| 2 ইস্রায়েলের কুমারীত্ব নষ্ট হয়ে গেছে| সে আর উঠবে না| সে একাকী নোংরার উপর পড়ে আছে| তাকে ওঠাবার জন্য কোন লোকই নেই| 3 প্রভু আমার, সদাপ্রভু এই কথাগুলো বলছেন: “সৈন্যরা যারা 1,000 লোককে নিয়ে শহর ত্যাগ করবে তারা শুধু 100 জন নিয়ে ফিরে আসবে| 100 জন নিয়ে যারা শহর ছেড়ে বাইরে যাচ্ছে, তারা কেবলমাত্র 10 জন লোক নিয়ে ফিরবে| 4 ইস্রায়েলবাসীকে (ইস্রায়েলের রাজপরিবারের লোকদের হয়তো ইঙ্গিত করা হয়েছে|) প্রভু এই কথাটি বলছেন: “আমার অণ্বেষণ কর এবং জীবনে বাঁচ| 5 কিন্তু বৈথেলের দিকে তাকিও না| গিল্গলে য়েও না| সীমান্ত পেরিও না এবং বের্-শেবাতে য়েও না| গিল্গলবাসীদের কযেদী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হবে এবং বৈথেল ধ্বংস হবে| 6 প্রভুর কাছে যাও এবং বেঁচে থাকো| যদি তোমরা প্রভুর কাছে না যাও, তবে য়োষেফের বাড়ীতে আগুন লাগাতে শুরু করবে| সেই আগুন য়োষেফের গৃহ ধ্বংস করবে এবং কোন মানুষই বৈথেলের সেই আগুন নেভাতে পারবে না| 7 সাহায্যের জন্য তোমাদের ঈশ্বরের কাছে যাওয়া উচিত্| ঈশ্বর প্লিয়েডস এবং ওরিওনকেসৃষ্টি করেছিলেন| তিনি অন্ধকারকে ভোরের আলোতে পরিবর্তিত করেছেন| তিনি দিনকে অন্ধকারের রাত্রিতে পরিবর্তিত করেছেন| তিনি সমুদ্রের জলকে আহবান করেছেন এবং পৃথিবীতে তাদের ঢেলে দিচ্ছেন| তাঁর নাম হচ্ছে যিহোবা (প্রভু)| তিনিই সেই যিনি শক্তিশালী শহরে হিংসা বাড়ান| তিনিই সেই, যিনি একটা সুরক্ষিত শহরকে হিংসাত্মক অপরাধ দ্বারা ধ্বংস হতে দেন|”তোমরা ধার্মিকতাকে বিষে পরিবর্তন কর এবং ন্যায় বিচারকে হত্যা করে তা ভূপতিত কর| 8 9 10 ভাব্বাদীরা জনসাধারণের কাছে যায়, এবং সাধারণ মানুষ য়ে খারাপ কাজ করছে তার বিরুদ্ধে কথা বলে| য়ে ভাব্বাদীরা ন্যায় এবং সহজ সত্য শেখায় লোকে তাদের ঘৃণা করে এবং লোকরা ঐ ভাব্বাদীদের ঘৃণা করে| 11 তোমরা গরীব লোকদের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে কর নিচ্ছ| তোমরা তাদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ গম নিচ্ছ| তোমরা পাথরের টুকরো দিয়ে শৌখিন বাড়ি বানাচ্ছ| কিন্তু তোমরা কখনই ওই বাড়িগুলোতে বাস করতে পারবে না| তোমরা সুন্দর দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরী করছো| কিন্তু তোমরা কখনই ঐ দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে তৈরী পানীয় আস্বাদ করতে পারবে না| 12 কেন? কারণ, আমি তোমাদের বহু অপরাধের খবর জানি| তোমাদের পাপাচার খুবই খারাপ| য়ে সব মানুষ ভাল কাজ করছে তাদের তোমরা আঘাত করেছ| অপরাধ চাপা দেবার জন্য তোমরা অর্থ নিচ্ছ| তোমরা গরীব লোকদের তাদের মামলাগুলির সুবিচারের জন্য আদালতে আনার সুয়োগ দাও না| 13 সেই সময়, বিজ্ঞ শিক্ষকরা নীরব হয়ে যাবেন| কেন? কারণ, সময়টা খারাপ| 14 তোমরা বলো য়ে, ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে আছেন| সে জন্যে ভাল কাজ কর, খারাপ কাজ নয়| তাহলে তোমরা বাঁচবে এবং প্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সত্যিই তোমাদের সঙ্গে থাকবেন| 15 যা মন্দ তাকে ঘৃণা কর এবং যা ভাল তাকে ভালবাসো| আদালতে ন্যায্য বিচার ব্যবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে এসো| হয়তো তাহলে প্রভু সর্বশক্তিমান য়োষেফের পরিবারে য়াঁরা বেঁচে আছেন তাঁদের প্রতি দয়াপরবশ হবেন|” 16 আমার সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেন, “লোকে জনসাধারন্যে বিলাপ করবে| সাধারণ লোক রাস্তাঘাটে কাঁদবে| লোকে পেশাদারী বিলাপকারীদের ভাড়া করে আনবে| 17 দ্রাক্ষাক্ষেতে সাধারণ লোকরা চিত্কার করে কাঁদবে| কারণ আমি সে পথ দিয়ে যাবার সময়ে তোমাদের শাস্তি দেব|” প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন| 18 তোমাদের মধ্যে কযেক জন প্রভুর বিচারের বিশেষ দিনটি দেখতে চাইছো| তোমরা কেন ঐ বিশেষ দিনটি দেখতে চাইছো? প্রভুর ঐ বিশেষ দিনটিতে অন্ধকারই নিয়ে আসবে, আলো নয়| 19 তোমরা এমন মানুষের মতো হবে য়ে সিংহের আক্রমণ থেকে পালাতে পারে কিন্তু ভাল্লুকের দ্বারা আএান্ত হয় ! তোমরা এমন একটি লোকের মত হবে য়ে নিরাপত্তার জন্য বাড়ীতে যায় অথচ দেওয়ালে হেলান দিলেই সাপ তাকে কামড়ায! 20 প্রভুর বিশেষ দিনটি দুঃখের হবে, আনন্দের নয়! অন্ধকারের দিন হবে, আলোর নয়| তা নৈরাশ্যের দিন হবে মিটমিটে আলোও সেখানে থাকবে না| 21 “আমি তোমার ছুটির দিনগুলো ঘৃণা করি! আমি তাদের স্বীকার করবো না! আমি তোমাদের ধর্মীয় সভাগুলো উপভোগ করতে পারি না! 22 এমনকি আমাকে উত্সর্গ করার জন্য যদি হোমবলি উত্সর্গ এবং শস্য়ের উত্সর্গ দাও আমি সেগুলো গ্রহণ করব না! এমনকি আমি স্থূলকায পশুগুলোর দিকে তাকাবো না যা তুমি মঙ্গল নৈবেদ্যর জন্য উত্সর্গ কর| 23 তোমাদের চিত্কার করা গানগুলো এখান থেকে নিয়ে যাও| আমি তোমাদের বীণার সুরও শুনতে চাই না| 24 তোমাদের দেশের মধ্যে সর্বত্র সুবিচারের ধারা জলের মতোই সহজে বয়ে য়েতে দাও| ধার্মিকতা স্রোতের মত বয়ে যাক য়েটা কখনও শুকিয়ে যাবে না| 25 ইস্রায়েল, তোমরা 40 বছর ধরে আমার জন্য মরুভূমিতে উত্সর্গ এবং নৈবেদ্য দিয়েছিলে| 26 কিন্তু তোমরা তোমাদের রাজা সিক্কূত্ এবং কিযূনেরমূর্ত্তিও বহন করেছ| এবং তোমরা নিজেরা তোমাদের দেবতাদের জন্য তারা বানিয়েছিলে| 27 সে জন্য দম্মেশকের ওপারে বন্দী হিসাবে য়েন তোমাদের নিয়ে যাওয়া হয় তার ব্যবস্থা করব|” প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন| তাঁর নাম সর্বশক্তিমান ঈশ্বর!
1 সিয়োনের তোমরা যারা খুব আরামে জীবনযাপন করছ এবং শমরিয়া পর্বতে যারা নিরাপত্তা অনুভব করছ তাদের জন্য খারাপ সময় আসছে| সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতিতে “গুরুত্বপূর্ণ” নেতাসমূহ| ইস্রায়েলবাসীরা তোমাদের কাছে সাহায্যের জন্য আসে| 2 কল্নীতে গিয়ে দেখো| সেখান থেকে বৃহত্ শহর হমাতে যাও| পলেষ্টীয়দের শহর গাতে যাও| তোমরা কি এই রাজ্যগুলি থেকে বেশী ভাল আছো? না| তাদের দেশগুলি তোমাদের দেশগুলির থেকে বড়| 3 তোমরা যারা খারাপ সময় এড়িয়ে য়েতে চাইছ, তারা হিংসার শাসন এমশঃ কাছে নিয়ে আসছ| 4 কিন্তু এখন তোমরা সব রকম আরাম উপভোগ করছ| তোমরা হাতির দাঁতের খাটে শুয়ে আছো এবং তোমরা শয্যায় হাত-পা ছড়িয়ে দিয়েছ| তোমরা আস্তাবল থেকে বাছুর এবং মেষের দল থেকে ছোট ছোট মেষগুলো এনে খাচ্ছো| 5 তোমরা তোমাদের বীণা বাজাচ্ছো এবং দায়ূদের মত, বাজনা বাজানো অভ্যাস করছ| 6 শৌখীন পেয়ালা থেকে তোমরা দ্রাক্ষারস পান করছ| এবং সব চেয়ে ভালো সুগন্ধি ব্যবহার করছ| এবং য়োষেফের পরিবার য়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার জন্য মোটেই উদ্বিগ্ন নও| 7 ওই লোকরা এখন তাদের শয্যায় শরীর এলিযে দিয়েছে| কিন্তু তাদের সুসময় শেষ হবে| তাদের বন্দী হিসাবে বিদেশী রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে| এবং তারাই হবে প্রথম নিয়ে যাওয়া বন্দী লোকের দল| 8 প্রভু আমার সদাপ্রভু তাঁর নাম ব্যবহার করেছেন এবং এই প্রতিশ্রুতি করেছেন:“য়ে জিনিসের জন্য যাকোব গর্ব করে সে জিনিসকে আমি ঘৃণা করি| আমি তাদের প্রাসাদগুলিকে ঘৃণা করি| তাই আমি শএুদের এই শহর এবং এর মধ্যে সব কিছু গ্রেপ্তার করতে দেব|” 9 সেই সময়, কোন বাড়ীতে যদি দশ জনও বেঁচে থাকে তবে তারাও মারা যাবে| 10 এবং যখন কেউ মারা যায় তখন এক জন আত্মীয় সেই দেহ নিতে আসবে যাতে সে মৃতদেহ বের করে নিয়ে গিয়ে দাহ করতে পারে| আত্মীয়স্বজন অস্থিগুলোকে নিয়ে যাবার জন্য আসবে| আর ঘরের পিছনে থাকা কোন লোককে উ?শ্য করে চিত্কার করে বলবে, “এখানে কি তোমার কাছে কোন মৃতদেহ আছে?”সেই ব্যক্তিটি উত্তরে বলবে, “না়়়!”তখন সেই লোকটির আত্মীয় বাধা দিয়ে বলবে, “চুপ করো আমরা প্রভুর নাম ব্যবহার করতে চাই না|” 11 দেখো, ঈশ্বর আদেশ দেবেন এবং বৃহত্ বাড়ীগুলি টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে পড়বে এবং ছোট বাড়ীগুলি ছোট ছোট খণ্ডে ভেঙ্গে পড়বে| 12 ঘোড়ারা কি আলগা পাথরের উপর দিয়ে ছোটে? না! লোকরা কি লাঙ্গল দেওয়ার জন্য গরুগুলোকে পাথরের ওপর ব্যবহার করে? না! কিন্তু তোমরা সব কিছু উলেট ফেলো| তোমরা ধার্ম্মিকতাকে বিষে পরিণত করেছিলে| আর ন্যায় বিচারকে তিক্ত বিষে পরিণত কর| 13 তোমরা লো-দেবরেআনন্দ কর| তোমরা বলছ, “আমরা আমাদের নিজস্ব শক্তিবলে কার্নেম অধিকার করেছি|” 14 “কিন্তু ইস্রায়েল, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে একটি জাতিকে পাঠাব| সেই জাতি তোমাদের সমস্ত দেশের মধ্যে গণ্ডগোলের সৃষ্টি করবে| লেবো-হমাত্ থেকে আরবাহ্-ব্রুক পর্য়ন্ত সবটা জুড়ে|” প্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ওই কথাগুলো বলেছিলেন|
1 প্রভু এই জিনিসটি আমাকে দেখিয়েছিলেন: যখন দ্বিতীয়বার শস্য বাড়তে আরম্ভ করেছে সেই সময়ে তিনি পঙ্গপালদের তৈরী করেছিলেন| রাজা প্রথম শস্য কেটে নেওয়ার পর এটা ছিল দ্বিতীয় শস্য চাষ| 2 যখন পঙ্গপাল দেশের সমস্ত ঘাস ধ্বংস করে ফেলেছিল, তখন আমি বলেছিলাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু, দয়া করে আমাদের ক্ষমা করুন! যাকোব কি ভাবে উদ্ধার পাবে? সে এত ক্ষুদ্র! কারণ সে খুব দুর্বল!” 3 তখন প্রভু এই বিষয়ে তার মন পরিবর্তন করে বললেন, “এই রকম ঘটবে না|” 4 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই বিষয়গুলি আমাকে দেখালেন: আমি দেখলাম প্রভু ঈশ্বর বিচারের জন্য আগুনকে ডাকছেন| সেই আগুন গভীর সাগরকে ধ্বংস করেছিল এবং ভূমিকেও গ্রাস করতে শুরু করেছিল| 5 তখন আমি বললাম, “হে প্রভু ঈশ্বর, দয়া করে ক্ষান্ত হোন| যাকোব কি ভাবে রক্ষা পাবে? কারণ সে ক্ষুদ্র|” 6 তখন প্রভু এবিষয়ে তাঁর মন পরিবর্তন করে বললেন, “এই ঘটনাও ঘটবে না|” 7 প্রভু আমাকে এই দর্শন দেখালেন: প্রভু তাঁর হাতে ওলন দড়ি নিয়ে এক দেওয়ালের ধারে দাঁড়িয়েছিলেন| 8 প্রভু আমায় বললেন, “আমোষ, তুমি কি দেখছ?”আমি বললাম, “একটি ওলন-দড়ি|”তখন আমার সদাপ্রভু বললেন, “দেখ, আমি ইস্রায়েলের লোকের মধ্যে ওলন-দড়ি রাখব| তাদের ‘অসাধুতাকে’ আমি আর ফস্কাতে দেব না| আমি কালো দাগগুলি 9 সরিয়ে দেব| 9ইস্হাকের উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস হবে| ইস্রায়েলের পবিত্র স্থানগুলো পাথরের ঢিবিতে পরিণত করা হবে| আমি যারবিযামের পরিবারকে আক্রমণ করে তরবারি দ্বারা হত্যা করব|” 10 অমত্সিয, বৈথেলের প্রধান যাজক ইস্রায়েলের রাজা যারবিযামের কাছে এই বার্তা পাঠালেন: “আমোষ আপনার বিরুদ্ধে চএান্ত করছে| ইস্রায়েলের লোকরা যাতে আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সে তার চেষ্টা করছে| সে এত কথা বলছে য়ে তার সব কথা এই দেশ ধরে রাখতে পারছে না| 11 আমোষ বলছে, ‘যারবিয়াম তরবারি দ্বারা নিহত হবে এবং ইস্রায়েলের লোকদের বন্দী হিসাবে তাদের দেশ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হবে|”‘ 12 আর অমত্সিয আমোষকে বলল, “হে দর্শক যিহূদায় চলে যাও, সেখানে খাও দাও আর প্রচার কর| 13 কিন্তু বৈথেলে আর কখনও ভাব্বাণী কর না| এ হল যারবিযামের পবিত্র জায়গা, ইস্রায়েলের মন্দির!” 14 তখন আমোষ উত্তরে অমত্সিযকে বললেন, “আমি একজন পেশাগত ভাব্বাদী নই; এমনকি ভাব্বাদীদের পরিবার থেকেও নই| আমি গো-পালন করি ও ডুমুর গাছের যত্ন নিই| 15 আমি একজন মেষপালক ছিলাম| কিন্তু প্রভু মেষপাল তত্ত্বাবধানের কাজ থেকে আমায় ডেকে নিলেন এবং বললেন, ‘যাও এবং আমার লোক ইস্রায়েলকে ভবিষ্যদ্বাণী কর|’ 16 তাই প্রভুর বার্তা শোন| তুমি আমায় ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে কোন ভাব্বাণী বলতে ও ইস্হাক পরিবারের কাছে প্রচার করতে নিষেধ করেছ| 17 কিন্তু প্রভু বলেন, ‘তোমার স্ত্রী নগরের মধ্যে বেশ্যা হবে| তোমার পুত্র-কন্যাদের তরবারি দ্বারা হত্যা করা হবে| অন্য লোকরা তোমার জমি হস্তগত করে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবে আর এক বিজাতীয দেশে তোমার মৃত্যু হবে| ইস্রায়েলের লোকদের নিশ্চিতভাবে এই দেশ থেকে বন্দী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হবে|”‘
1 প্রভু আমাকে এই রকম দেখালেন: আমি দেখলাম এক ঝুড়ি গ্রীষ্মের ফল| 2 প্রভু আমায় বললেন, “আমোষ তুমি কি দেখছ?”তখন প্রভু আমায় বললেন, “আমার লোক ইস্রায়েলের পরিণাম এসে গেছে| আমি আর তাদের পাপ উপেক্ষা করব না|” 3 মন্দিরের গানগুলি শবযাত্রার করুণ গানে পরিণত হবে| প্রভু আমার সদাপ্রভুই আমায় এই কথাগুলো বলেছেন| চারিদিকে শবদেহ, নীরবে লোকে সেই সব শব দেহ বহন করে এনে স্তূপ করে ফেলে রাখবে|” 4 তোমরা যারা অসহায় লোকদের দাবিয়ে চলো, যারা এই দেশের দরিদ্র লোকদের ধ্বংস করতে চেষ্টা করছ, আমার কথা শোন! 5 তোমরা ব্যবসায়ীরা বলে থাক, “কখন অমাবস্যা গত হবে যাতে আমরা আবার বেচাকেনা করতে পারি? কখন বিশ্রামদিন শেষ হবে যাতে আমরা গম এনে বেচতে পারি? তখন আমরা দাম বাড়াতে পারব এবং মাপের পাত্র ছোট করতে পারব|আমরা ওজনের হের ফের করে লোক ঠকাতে পারব| 6 গরীবরা তাদের ঋণ শোধ করতে পারবে না| তাই আমরা তাদের এীতদাসের মত কিনে নেব| ওই সব অসহায় লোকদের আমরা এক জোড়া জুতোর দামে কিনে নেব| আমরা মাটিতে পড়ে যাওয়া গম বিয়ে করব|” 7 প্রভু তার নামে প্রতিশ্রুতি করলেন, যাকোবের গর্ব|“এই সব লোকরা য়ে সব কাজ করেছে তা আমি কখনই ভুলে যাব না| 8 সমস্ত দেশ ঐসব বিষয়ের জন্য কেঁপে উঠবে| দেশে বসবাসকারী প্রতিটি লোক মৃতদের জন্য এন্দন করবে| মিশরের নীল নদের মত সমস্ত দেশ উথাল -পাতাল করবে|” 9 প্রভু আরও বলেছেন: “সেই সময় আমি সূর্য়কে দুপুরবেলাতেই অস্তগত করব| আকাশ পরিষ্কার থাকলেও পৃথিবীকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করব| 10 তোমাদের ছুটির দিনগুলোকে মৃতদের জন্য শোকের দিনে পরিণত করব| তোমাদের সমস্ত গানগুলি (মৃতদের জন্য) বিলাপ গীতে পরিণত হবে| প্রত্যেক লোককে শোকবস্ত্র পরাব ও প্রত্যেকের মাথায় টাক পড়াব| একমাত্র পুত্রের বিয়োগের শোকের মত শোক করাব| আর শেষটা বড় তিক্ত হবে|” 11 প্রভু বলেছেন:“দেখ, এমন দিন আসছে যখন দেশে দুর্ভিক্ষ হবে| লোকে তখন রুটির জন্য ক্ষুধিত বা জলের জন্য পিপাসিত হবে না| না, লোকে প্রভুর বাক্যের জন্য ক্ষুধিত হবে| 12 লোকে ঈশ্বরের বাক্যের জন্য মৃত সাগর থেকে ভূমধ্য সাগর পর্য়ন্ত এবং উত্তরের দেশ থেকে পূর্বের দেশ পর্য়ন্ত ঘুরে বেড়াবে| লোকরা প্রভুর বাক্যের খোঁজে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াবে কিন্তু তা পাবে না| 13 সেই সময় সুন্দর, তরুণ ও তরুণীরা তৃষ্ণায় অজ্ঞান হয়ে পড়বে| 14 তারা শমরিয়ার পাপেরনামে শপথ করেছিল, এই বলে, ‘হে দান, আমরা তোমার দেবতার নামে শপথ করেছি|’ আমরা তোমার দেবতা বের্-শেবার নামে শপথ করছি|’ কিন্তু তারা পড়ে যাবে এবং আর কখনো উঠতে পারবে না|”
1 আমি আমার সদাপ্রভুকে বেদীর পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম| তিনি বললেন,“স্তম্ভের মাথায় আঘাত কর তাহলে সমস্ত অট্টালিকা নড়ে উঠবে| এমনকি চৌকাঠ পর্য়ন্ত পড়ে যাবে| সেই স্তম্ভ লোকেদের মাথায় ভেঙ্গে ফেল আর তাও যদি কেউ কেউ বেঁচে থাকে তবে আমি তরবারির দ্বারা তাদের হত্যা করব| পালালেও, এক জনও রক্ষা পাবে না| 2 তারা যদি পাতাল পর্য়ন্ত গভীর গর্ত খুঁড়ে তার মধ্যে যায়ও আমি তাদের সেখান থেকেও টেনে বের করে আনব| তারা আকাশে উঠে গেলেও সেখান থেকে আমি তাদের নামিয়ে আনব| 3 কর্ম্মিল পর্বতের চূড়ায় লুকিয়ে থাকলেও আমি সেখানে তাদের খুঁজে বের করব| এবং সেখান থেকে নিয়ে আসব| যদি তারা সমুদ্রের তলায় গিয়ে আমার কাছ থেকে লুকোবার চেষ্টা করে, তবে আমি সেখানে সাপকে আদেশ করব আর সে তাদের কামড়াবে| 4 যদি তারা বন্দী হতে শএুদের সামনে যায় তবে সেখানে আমি তরবারিকে আদেশ করব আর তা তাদের হত্যা করবে| হ্যাঁ, আমি তাদের উপর নজর রাখব দেখব কিভাবে তাদের উপর অমঙ্গল আনতে পারি, মঙ্গল নয়|” 5 আমার সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান প্রভু দেশকে স্পর্শ করলে তা গলে যাবে| তখন দেশে বসবাসকারী সকলে মৃতদের জন্য শোক করবে| দেশ মিশরীয় নীল নদের মতো উথাল পাতাল করবে| 6 প্রভু তাঁর ওপরের ঘরগুলো আকাশের অধিকতর উচেচ তৈরি করেছেন| তিনি তাঁর লোকদের পৃথিবীর ভিত্তির ওপর স্থাপন করেছেন| তিনি সমুদ্রের জলকে ডাকেন এবং বৃষ্টিরূপে তা দেশের ওপর ঢেলে দেন| যিহোবা তাঁর নাম| 7 প্রভু এই কথা বলেন:“হে ইস্রায়েল, তুমি আমার কাছে কূশীয়দের মতো| আমি ইস্রায়েলকে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছিলাম| আমি কপ্তোর থেকে পলেষ্টীয়দের এবং কীর থেকে অরামীয়দের বের করে এনেছিলাম|” 8 প্রভু আমার সদাপ্রভু পাপপূর্ণ রাজ্য, ইস্রায়েলের দিকে চেয়ে আছেন| প্রভু বলেন, “আমি পৃথিবীর বুক থেকে ইস্রায়েলকে উত্পাটন করব কিন্তু যাকোবের পরিবারকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করব না| 9 আমি ইস্রায়েল জাতিকে ধ্বংস করবার আদেশ দিচ্ছি| আমি ইস্রায়েলের লোকদের সমস্ত জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেব| যখন সে চালনিতে শস্য ঝাড়ে তখন ভালো শস্যগুলি চালনির ভেতর দিয়ে নীচে পড়ে কিন্তু খারাপ ডেলাগুলি ধরা পড়ে| যাকোবের পরিবারের সঙ্গেও তেমনটি করা হবে| 10 আমার লোকদের মধ্যে পাপীরা বলে, ‘আমাদের কোন মন্দ ঘটবে না |’ কিন্তু তাদের সবাইকে তরবারির আঘাতে হত্যা করা হবে!” 11 “দায়ূদের তাঁবুপতিত হয়েছে| কিন্তু সেই সময় আমি আবার তা স্থাপন করব| আমি দেওয়ালের গর্তগুলো সারাবো| আমি এর ধ্বংসস্তূপ থেকে আবার গড়ব| আমি তাকে পূর্বে য়েমন ছিল সেই ভাবে আবার গড়ে তুলব| 12 তারপর, তারা, যারা আমার নামে অভিহিত হয়, তারা ইদোমের এবং দেশের অন্যান্য অবশিষ্ট অংশের সত্ত্ব গ্রহণ করবে প্রভু বলেন, তিনি এগুলো করেন| 13 প্রভু বলেন, “সেই সময় আসছে যখন হালবাহক শস্য ছেদকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পা ফেলবে| দ্রাক্ষা মর্দনকারী, দ্রাক্ষা চযনকারীকে ছাড়িযে যাবে| পর্বত এবং উপপর্বত থেকে মিষ্ট দ্রাক্ষারস ঝরে পড়বে| 14 আমি আমার লোকদের ইস্রায়েলকে বন্দী দশা থেকে ফিরিয়ে আনব| তারা ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরগুলি আবার গড়বে এবং সেখানে বাস করবে| তারা দ্রাক্ষাক্ষেত স্থাপন করবে এবং তাদের উত্পন্ন দ্রাক্ষারস পান করবে| তারা বাগান করবে এবং তা থেকে ফল আহরণ করে খাবে| 15 আমি আমার লোকদের তাদের দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করাব| য়ে দেশ আমি তাদের দিয়েছি, সেখান থেকে তাদের আর কখনও বিচ্ছিন্ন করা হবে না|” প্রভু তোমার ঈশ্বরই এই সব বলেছেন|
1 ওবদিয়ের দর্শন| আমার প্রভু সদাপ্রভু ইদোম সম্বন্ধে এই কথাগুলো বলেছেন| আমরা বয়ং প্রভু ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি খবর শুনলাম| বিভিন্ন জাতির কাছে একটি বার্তা পাঠানো হয়েছিল| সে বলেছিল, “চলো, ইদোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি|” 2 “ইদোম, আমি তোমাকে ক্ষুদ্রতম জাতিতে পরিণত করব| প্রত্যেকে তোমাকে ঘৃণা করবে| 3 তোমার অহঙ্কার তোমাকে ওপরে তুলেছে| তুমি সেই সব গুহায় বাস কর, য়েগুলি দূরারোহ উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত| তোমার বাড়ী পর্বতের থেকে বেশ অনেক ওপরে| সেজন্য তুমি মনে মনে বলো, ‘কেউ আমাদের নামাতে পারে না|”‘ 4 প্রভু ঈশ্বর এই কথাটি বলেছেন: “তুমি যদিও ঈগলের মতো উঁচুতে ওড়ো এবং তারাদের মধ্যে তোমার বাসা করে রাখো, তাহলেও আমি সেখান থেকে তোমাকে নীচে নামাব|” 5 সত্যিই তোমার বিনাশ হবে! চোররা তোমার কাছে আসবে! আর, ডাকাতরা রাত্রিবেলায আসবে! ওই চোরেরা যা চায তার সবই নিয়ে যাবে! যখন শ্রমিকরা তোমাদের ক্ষেতে দ্রাক্ষাসমূহ সংগ্রহ করে তারা অন্তত কযেকটা দ্রাক্ষা ফেলে রেখে যায়| 6 কিন্তু শএুরা এষৌর (ইদোমের অধিবাসীরা এষৌর বংশধর) লুকোনো গুপ্তধন তন্ন তন্ন করে খুঁজবে এবং তারা সবই খুঁজে পাবে| 7 য়ে সব লোকরা তোমাদের সহকারী তারা সবাই তোমাদের দেশ থেকে জোর করে বের করে দেবে| তোমাদের অন্তরঙ্গ বন্ধুরা তোমাদের সঙ্গে চালাকী করবে এবং তোমাদের অন্যায় কাজ করতে বাধ্য করবে| তোমাদের সঙ্গীরা তোমাদের ফাঁদে ফেলবার পরিকল্পনা করবে| তারা বলে, ‘তিনি কিছুই সন্দেহ করবেন না!”‘ 8 প্রভু বলেছেন, “ঐদিন আমি জ্ঞানী লোকদের ধ্বংস করব| আমি এষৌর পর্বতের বুদ্ধিমান লোকদের ধ্বংস করব| 9 তৈমন, তোমার শক্তিমান মানুষগুলি আতঙ্কিত হবে| এষৌর পর্বতের প্রত্যেকটি মানুষই ধ্বংস হবে| অনেক লোককে হত্যা করা হবে| 10 লায তোমরা চাপা পড়বে এবং তোমরা চিরকালের জন্য ধ্বংস হয়ে যাবে| কিন্তু কেন? কারণ তুমি তোমার ভাই যাকোবের সঙ্গে অত্যন্ত নিষ্ঠুর আচরণ করেছ| 11 তুমি ইস্রায়েলের শএুদের সঙ্গে হাত মিলিযেছিলে| অচেনা মানুষ ইস্রায়েলের ধন নিয়ে গেছে| বিদেশীরা ইস্রায়েল শহরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছিল| সেই সব বিদেশীরা ঘুঁটি চেলে ঠিক করেছিল, জেরুশালেমের কোন্ অংশটা তারা দখল করবে| এবং তুমি তাদের সঙ্গে ঠিক সেইখানে নিজের ভাগটি বেছে নেবার জন্য অপেক্ষা করেছিলে| 12 তুমি তোমার ভাইযের বিপদের সময়ে হেসেছিলে| সেটা কখনও তোমার করা উচিত হয়নি| যখন শএুরা যিহূদা ধ্বংস করছিল সেই সময়ে তুমি খুশী ছিলে| তোমার কখনও সেটা করা উচিত হয়নি| তাদের বিপদের সময় তুমি বড়াই করেছিলে| তোমার কখনও সেটা করা উচিত হয়নি| 13 তোমরা আমার প্রজাদের শহরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছিলে, এবং তাদের সমস্য়া দেখে তোমরা হেসেছিলে| তাদের সমস্য়ার সময়ে তোমাদের কখনও সেটা করা উচিত হয়নি| তাদের বিপদের সময়ে তোমরা তাদের ধনসম্পদ নিয়ে নিয়েছিলে| তোমাদের কখনও সেটা করা উচিত হয়নি| 14 চৌমাথার মোড়ে তোমরা দাঁড়িয়েছিলে এবং য়ে সব লোকরা পালাবার চেষ্টা করছিল তাদের তোমরা হত্যা করেছিলে| তোমাদের কখনও সেটা করা উচিত হয়নি| য়ে সব লোকরা জীবিত অবস্থায় পালাচ্ছিল তোমরা তাদের ধরেছিলে| কখনও সে কাজ তোমাদের করা উচিত হয়নি| 15 সব জাতির ওপর প্রভুর দিন আসছে| তোমরা অন্যদের প্রতি যা খারাপ কাজ করেছিলে, তোমাদের প্রতিও সেগুলি ঘটবে| ওই একই খারাপ জিনিষ তোমাদের মাথাতেও পড়বে| 16 ওই একই মন্দ বিষয়গুলি তোমাদের মাথার ওপর এসে পড়বে| কেন? কারণ তোমরা আমার পবিত্র পর্বতের ওপর রক্তপাত ঘটিযেছ| তাই অন্যান্য জাতিরা তোমাদের রক্তও ঝরাবে|তোমরা শেষ হয়ে যাবে| মনে হবে য়েন তোমাদের কোন অস্তিত্বই ছিল না| 17 কিন্তু সিয়োন পর্বতে কিছু লোক জীবিত থেকে যাবে| তারা বিশেষ লোক বলে গণ্য হবে| যাকোবের বংশধররা নিজেদের অধিকারভুক্ত জিনিসগুলো ফিরিয়ে নিয়ে যাবে| 18 যাকোবের পরিবার আগুনের মত হয়ে উঠবে| য়োষেফের জাতি হবে অগ্নিশিখার মত| কিন্তু এষৌর উপজাতিরা হবে তৃণের মত| যিহূদাবাসীরা ইদোমকে পুড়িয়ে ফেলবে| যিহূদাবাসীরা ইদোমকে ধ্বংস করে দেবে| তখন এষৌর উপজাতির মধ্যে কেউ জীবিত থাকবে না|” কেন? কারণ প্রভু ঈশ্বরই এই কথাটি বলেছেন| 19 তখন নেগেভ-এর লোকরা এষৌর পর্বতে বাস করবে এবং পাহাড়ের পাদদেশের লোকরা এসে পলেষ্টীয়দের দেশগুলি অধিকার করে নেবে|ওই সব লোকরা ইফ্রয়িমের এবং শমরিয়ার দেশে বাস করবে| গিলিয়দ বিন্যামীনের অধিকারভুক্ত হবে| 20 ইস্রায়েলের লোকরা তাদের বাড়ী ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল; কিন্তু ওই সব লোকরাই সারিফত্ পর্য়ন্ত কনানীয় দেশ অধিকার করবে| যিহূদার লোকরা জেরুশালেম ত্যাগ করে সফারদে গিয়ে বাস করতে বাধ্য হয়েছিল| কিন্তু তারা নেগেভের শহরগুলি অধিকার করবে| 21 বিজয়ীরা সিয়োন পর্বতের উপরে যাবে| এবং য়ে সব লোকজন এষৌর পর্বতে থাকে তাদের শাসন করবে ও রাজ্যটি প্রভুর অধিকারভুক্ত হবে|
1 প্রভু অমিওযের পুত্র য়োনার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| প্রভু বলেছিলেন|, 2 “নীনবী একটা বড় শহর| আমি শুনেছি, সেখানকার লোকরা নানা রকম খারাপ কাজকর্ম করছে| কাজেই সেই শহরে যাও এবং লোকদের বল তারা য়েন সেই খারাপ কাজ করা বন্ধ করে|” 3 য়োনা ঈশ্বরের আদেশ মানতে চাননি সেজন্য য়োনা প্রভুর কাছ থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন| য়োনা যাফোতে গেলেন| য়োনা সেখানে একটা নৌকা দেখতে পেয়েছিলেন য়টা অনেক দূরের শহর তর্শীশে যাচ্ছিল| য়োনা নৌকাতে উঠে যাবার ভাড়া দিলেন| ঈশ্বরের কাছ থেকে পালিয়ে যাবার জন্য য়োনা ঐ নৌকায় তর্শীশ পর্য়ন্ত ভ্রমন করতে চেয়েছিলেন| 4 কিন্তু প্রভু সমুদ্রে একটা বড় রকমের ঝড় আনলেন| বাতাস সমুদ্রকে খুবই রুক্ষ করে তুললো| ঝড়টা এতই শক্তিশালী ছিল য়ে নৌকাটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হবার উপক্রম হল| 5 ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য লোকরা নৌকাটিকে হাল্কা করতে চেষ্টা করল| সে জন্য তারা নৌকার মালগুলো ছুঁড়ে সমুদ্রে ফেলে দিতে আরম্ভ করল| মাঝিরা খুবি ভয় পেয়ে গেল| প্রত্যেকে তাদের দেবতাদের উদ্দেশ্য প্রার্থণা করতে আরম্ভ করল| য়োনা নৌকার একেবেরে পশ্চাদ্ভাগে চলে গেলেন এবং তিনি শুয়ে পড়লেন ও ঘুমোতে গেলেন| 6 নৌকার প্রধান মাঝি য়োনাকে দেখতে পেল এবং বলল, “উঠে পড়ো! তুমি কেন ঘুমাচ্ছো? তুমি তোমার দেবতার কাছে প্রার্থনা করো! দেবতা বযতো তোমার প্রার্থনা শুনবেন এবং আমাদের রক্ষা করবেন!” 7 তখন লোকরা একে অপরকে বলল, “আমার অবশ্যই ঘুঁটি চেলে জানতে চেষ্টা করব এই দুর্য়োগগুলো কেন আমাদের ভাগ্যে ঘটছে|”সে জন্য লোকে ঘুঁটি চালল এবং দেখা গেল, য়োনার জন্যেই এই দুর্য়োগগুলো ঘটছে| 8 তখন লোকরা য়োনাকে বলল, “দেখ তোমার দোষেই এই ভয়ঙ্কর ঝড় আমাদের ভাগ্যে ঘটছে! সেজন্য আমাদের বল তুমি কি করেছো? তোমার পেশা কি? তুমি কোথা থেকে আসছো? তোমার দেশ কোথায? তোমার লোকরা কারা?” 9 য়োনা লোকদের বললেন, “আমি একজন ইব্রীয (ইহূদী)| আমি প্রভু, স্বর্গের ঈশ্বরের উপাসনা করি, তিনি সেই ঈশ্র যিনি সমুদ্র ও ভুমি সৃষ্টি করেছেন|” 10 য়োনা লোক জনদের বললেন, তিনি প্রভুর কাছে থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন| লোকরা এই কথা জেনে খুবই ভয় পেয়ে গেল| য়োনাতে তখন তারা জিজ্ঞেস করল, “তুমি তোমার ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কেন এমন ভয়ঙ্কর কাজ করেছ?” 11 বাতাস ও সমুদ্রের ঢেউ ক্রমশঃ শক্তিশালী হতে আরম্ভ করছিল| তাই লোকরা য়োনাকে জিজ্ঞেস করল, “আমারা আমাদের রক্ষা করার জন্য কি করবো? সমুদ্রকে শান্ত হয়ে যাবে|” 12 যোনা লোকদের বললেন, “আমি জানি আমি ভুল করেছি সেই জন্যই সমুদ্রে ঝড় এসেছে আমাকে সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দাও| তাহলে সমুদ্র শান্ত হয়ে যাবে|” 13 কিন্তু লোকরা য়োনাকে সমুদ্র ছুঁড়ে দিতে চাইল না| নৌকাটিকে তীরে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে লাগল| কিন্তু তারা সফল হল না| প্রচণ্ড বাতাস এবং উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে লাগল! 14 সেই জন্য লোকরা প্রভুর কাছে চিত্কার করে বলল, “প্রভু আমার এই লোকটিকে তার খারাপ কাজের জন্য সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছি| কাজেই দয়া করে বলবেন না য়ে আমরা এক নির্দোষ লোককে মেরে ফেলার জন্য দয়া করে আমাদের মেরে ফেলবেন না| আমরা জানি আপনি হচ্ছেন প্রভু, এবং আপনি যা চাইছেন তা সবকিছুই করতে পারেন| কিন্তু দয়া করে আপনি আমাদের প্রতি সদয হোন|” 15 সেই জন্য লোকরা য়োনাকে সমুদ্রে ফেলে দিল| ঝড় থেমে গেল- সমুদ্র আবার শান্ত হল! 16 লোকরা এই ঘটনা দেখে ভয় পেয়ে গেল এবং তারা প্রভুকে খুব ভয় পেত| তারা প্রভুর নামে বিশেষ শপথ নিল এবং নৈবেদ্য উত্সর্গ করল| 17 আর প্রভু য়োনাকে গিলে ফেলার জন্য একটা বড় মাছ ঠিক করে রেখেছিলেন| য়োনা মাছের পেটের মধ্যে তিন দিন ও তিন রাত্রি রইলেন|
1 মাছের পেটের মধ্যে থাকাকালীন য়োনা প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলেন, 2 “আমি খুব খারাপ অবস্তার মধ্যে ছিলাম| আমি প্রভুকে সাহায্যের জন্য ডাকলাম এবং তিনি আমাকে উত্তর দিলেন! আমি কবরের আরো গভীরে ছিলাম প্রভু, আমি আপনাকে চিত্কার করে ডাকলাম এবং আপনি আমার রব শুনতে পেলেন! 3 “আপনি আমাকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিলেন| আপনার শক্তিশালী ঢেউ আমার উপর পড়েছিল| আমি গভীর, অতি গভীর সমুদ্রে ডুবে গেলাম| আমার চারিদিকে কেবলই জল ছিল| 4 তখন আমি ভবছিলাম, “এখন আমাকে বাধ্য হয়েই সেই খানে য়েতে হবে যেখানে আপনি আমাকে দেখতে পাবে না|’ কিন্তু আমি সাহায্যের জন্য তবু আপনার পবিত্র মন্দিরের দিকে চেয়েছিলাম|” 5 “সমুদ্রের জল আমার চারিদিক ঘিরে ধরল| জল আমার মুখ ঢেকে দিল, আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না| ক্রমশঃ আমি গভীর থেকে গভীরতর সমুদ্রে চলে য়েতে থাকলাম| সমুদ্রের শৈবাল আমার মাথার চারিদিক জড়িয়ে গেল| 6 আমি সমুদ্রের তলদেশে ছিলাম, য়েখান থেকে পাহাড়গুলো আরম্ভ হয়েছে| আমি ভেবেছিলাম আমি এই কারাগারে সারা জীবনের জন্য বন্দী হয়ে গেছি| কিন্তু প্রভু আমার ঈশ্বর, আমাকে আমার কবরের মধ্য থেকে বের করে আনলেন! ঈশ্বর, আপনি আবার আমাকে জীবন দান করলেন! 7 “আমার আত্মা সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন| কিন্তু তখন আমি প্রভুকে স্মরণ করলাম| প্রভু, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম| এবং আপনি আপনার পবিত্র মন্দিরৈ আমার প্রার্থনাগুলি শুনেছিলেন| 8 “কযেক জন লেক মবল্যহীন মূর্ত্তি পূজো করে| কিন্তু ঐ মূর্ত্তিগুলি কখনই তাদের সাহায্য করবে না|” 9 পরিত্রাণ কেবল প্রভুর কাছ থেকেই আসে! “প্রভু আমি আপনার উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করব এবং আমি আপনার প্রশংসা করব ও আপনাকে ধন্যবাদ জানাবো| আমি আপনার কাছে বিশেষ প্রতিশ্রুতি করব এবং য়েগুলি করব বলে আমি প্রতিশ্রুতি করেছিলাম সেই সব কাজগুলো আমি করব|” 10 তখন প্রভু ওই মাছটির সঙ্গে কথা বললেন এবং মাছটি বমি করে য়োনাকে জমির উপরে ফেলল|
1 তখন প্রভু আবার য়োনার সঙ্গে কথা বললেন, 2 “ঐ বৃহত শহর নীনবীতে যাও এবং আমি তোম4াকে যা বলি তাই প্রচার কর|” 3 তাই য়োনা প্রভুর আজ্ঞাপালন করলেন এবং নীবনীতে গেলেন| নীহনী ছিল বেশ বড় শহর| শহরটাতে ঘুরতে এক জন লোকের তিন দিন সময় লাগত| 4 য়োনা শহরটির কেন্দ্র স্থলে গিয়ে জনসাধারণকে দর্মোপদেশ দিতে আরম্ভ করলেন| য়োনা বললেন, “আর 40 দিন পর, নীবনী ধ্বংস হয়ে যাবে!” 5 নীবনীবাসীরা ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বার্তা পেয়ে বিশ্বাস করল| লোকরা কিছু সময়ের জন্যে খাওয়া দেওয়া বন্ধ করে তাদের পাপ কাজ সম্বন্ধে চিন্তা করল| লোকরা তাদের দুঃখ প্রকাশ করার জন্য বিশেষ ধরণের জামা কাপোড় পরল| শহরের সব লোকরাই তা করল-মহান থেকে সাধারণ সকলেই| 6 নীবনীর রাজা এই কথাগুলো শুনলেন এবং তিনি নিজেও তার নিজের খারাপ কাজের জন্য দুঃখিত হলেন| সেজন্য রাজা তাঁর সিংহাসন ছেড়ে দিলেন| তার বিশেষ পোশাকও ছেড়ে ফেললেন এবং তিনি য়ে দুঃখিত তা দেখাবার জন্য বিশেষ ধরনের পোশাক পরলেন| তারপর রাজা ছাইযের মধ্যে বসলেন| 7 রাজা একটি বিশ্ষ বার্তা লিথে বার্তাটি শহরে প্রেরন করলেন:কিছু সময়ের জন্য লোকরা পালকে মাঠে চরতে দেওয়া হবে না| নীবনীতে জীবিত কিছুই কোন খাদ্য বে পানীয় খাবে না| 8 কিন্তু প্রত্যেক লোক এবং প্রত্যেক পশু তার দুঃখ প্রকাশ করার জন্য একটি বিশেষ পোশাক পরবে| লোককে ঈশ্বরের কাছে উচ্চস্বরে কাঁদতে হবে| প্রত্যেক লোকের জীবনযাত্রার পদ্ধতি পরিহর্তন করতে হবে এবং তারা খরাপ কাজ করা বন্ধ করবে| 9 তখন ইশ্বরও হয়তো পরিবর্তিত হবেন এবং তিনি য়ে কাজ করার কথা ভেবেছিলেন তা করবেন না| হয়তো ঈশ্বও বদলে যাবেন এবং ক্রুদ্ধ হবেন না| তাহলে আমরা ক্ষযপ্রাপ্ত হব না| 10 লোকে য়ে সব কাজ করেছে তা ঈশ্বর দেখেছিলেন| ঈশ্ব দেখলেন য়ে, লোকে খারাপ কাজ করা বন্ধ করেছে| কাজেই ঈশ্ব বদলে গিয়েছিলেন এবং যা ভেবেছিলেন তা করলেন না| লোককে ঈশ্বর শাস্তিও দিলেন না|
1 য়োনা ভাবলেন এটা খুবই খারাপ য়ে ঈশ্বর শহরটি রক্ষা করেছেন| য়োনা ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন| 2 য়োনা প্রভুকে অভিয়োগ করে বললেন, “আমি জানি এই সব ঘটনাই ঘটবে! আমি আমার দেশে ছিলাম এবং আপনিই আমাকে এখানে আসতে বলেছিলেন| সেই সময়, আমি জানতাম য়ে আপনি এই মন্দ শহরের লোকদের ক্ষমা করবেন| সে জন্য আমি ঠিক করেছিলাম তর্শীশে পালিয়ে যাব| আমি জানী য়ে আপনি খুবই দয়ালু ঈশ্বর! আমি জানি য়ে আপনি করুণায পরিপূর্ণ! আমি জানি য়ে যদি এই লোকরা তাদের মন্দ কাজকর্ম বন্ধ করে, তাহলে আপনি তাদের ধ্বংস করার পরিকল্পনা পরিবর্থন করবেন| 3 সেজন্য এখন আপনাকে জ্ঞিাসা করছি, প্রভু দয়া করে আমাকে হত্যা করুন| আমার পক্ষে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই ভালো হবে!” 4 তখন প্রভু বললেন, “তুমি কি মনে কর য়ে, আমি ওই লোকদের ধ্বংস করলাম না বলে তোমার রাগ করা ঠিক হচ্ছে?” 5 এই সব ব্যাপারের জন্য য়োনা ক্রুদ্ধ হয়েই রইলেন| সে জন্য সে শহর থেকে চলে গেলেন| য়োনা শহরের কাছেই পূর্বদিকে একটা জায়গায় গিয়ে হাজির হলেন| সেখানে য়োনা তার নিজের জন্য একটা আশ্রয় তৈরী করলেন| তখন তিনি সেখানকার ছাউনির তলায় ছায়াতে বসলেন এবং শহরে কি ঘটবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন| 6 তত্ক্ষনাত্ প্রভু একটি কুমড়ো গাছ হওয়ার আদেশ দিলেন এবং সেটি য়োনার ওপর খুব তাড়াতাড়ি য়োনার মাথা ছাড়িযে বেড়ে উঠল| তাতে য়োনার পক্ষে আরামে থাকবার জন্য একটি ঠাণ্ডা জায়গা তৈরী হল| এই গাছটির জন্য য়োনা খুবই খুশি হল| 7 পরের দিন সকালে, ঈশ্বর একটি কীটকে ওই গাছটির অংশ খাবার জন্য পাঠালেন| কীটটি গাছটি খেতে আরম্ভ করল এবং গাছটি মরে গেল| 8 সূর্য় যখন মধ্য আকশে এলো তখন ঈশ্বর পূর্ব দিক থেকে গরম হাওযা বইয়ে দিলেন| য়োনার মাথার ঠিক ওপরে সূর্য় খুবই গরম উঠলো এবং য়োনা খুবই দুর্বল হয়ে পড়লেন| য়োনা মরবার জন্য ঈশ্বরের অনুমতি চাইলেন| তিনি বললেন, “আমার বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই বরং ভালো|” 9 কিন্তু ঈশ্বর য়োনাকে বললেন, “তুমি কি মনে কর য়ে শুধু মাত্র গাছটি মরে যাবার জন্যই তোমার রাগ করা ঠিক হয়েছে?”য়োনা উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আমার রাগ করাই উচিত! আমি এতোই ক্রুদ্ধ য়ে সরতে চাই|” 10 এবং প্রভু বললেন, “তুমি ওই চারা গাছটার জন্য কিছুই করনি! তাকে তুমি বাড়িযে তোলনি! রাত্রিবেলায চারাগাছটা বেড়ে উঠেছিলো এবং পরের দিন সকালেই মরে গেছে| আর এখন তুমি ওই গাছটার জন্য দুঃখিত! 11 তুমি যদি ওই চারাগাছটার জন্য এত মনঃক্ষুন্ন হতে পারো, তাহলে অবশ্যই আমি ঐ বড় শহর নীনবীর জন্য দুঃখ বোধ করতে পারি এবং তাকে ক্ষমা করতে পারি| ওই শহরে বহু লোক এবং জীবজন্তু আছে| সংখ্যায় 1,20,000বেশী মানুষ ওই শহরে আছে, এবং তারা তাদের মন্দ কাজের সম্বন্ধে জানত না|”
1 প্রভুর বাক্য মীখার কাছে এল| এটা ছিল য়োথম, আহস এবং হিষ্কিয় এই রাজাদের রাজত্বের কাল| এঁরা ছিলেন যিহূদার রাজা| মীখা ছিলেন মোরেষ্টীযের বাসিন্দা| শমরিয়া এবং জেরুশালেমের সম্বন্ধে মীখার এই দর্শন হযেছিল| 2 ওহে লোকেরা, তোমরা শোন! পৃথিবী এবং পৃথিবীর সমস্ত জিনিষ, তোমরা শোন! আমার প্রভু সদাপ্রভু তাঁর পবিত্র মন্দির থেকে আসবেন| আমার প্রভু তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসাবে আসবেন| 3 দেখো, প্রভু তাঁর স্থান হতে বের হযে আসছেন| তিনি পৃথিবীর উচ্চ স্থানগুলির উপর দিয়ে হেঁটে য়াবার জন্য আসছেন| 4 তাঁর পাযের তলার পর্বতগুলি গলতে শুরু করবে, য়েমন মোম আগুনের সংস্পর্শে এসে গলে য়ায| উপত্যকাগুলি ফেটে য়াবে এবং উঁচু পাহাড় থেকে পড়া জলের মতো নীচের দিকে বইতে থাকবে| 5 কিন্তু কেন? কারণ হল, যাকোবের পাপ এবং ইস্রাযেল জাতির পাপসমূহ|কি কারণে যাকোব পাপ করল? শমরিয়াই তার কারণ| যিহূদাতে আরাধনা করার উচ্চ স্থান কোথায? জেরুশালেমই কি সেই জায়গা নয! 6 সেই কারণেই, আমি শমরিয়াকে একটি পাথরের স্তুপ বানিয়ে দেব এবং দ্রাক্ষা ক্ষেতের জন্য তৈরী একটি স্থান| আমি শমরিয়ার পাথরগুলোকে নীচের উপত্যকায় ঠেলে দেব, ফলে কেবল তার ভিতটা পড়ে থাকবে! 7 তার সব মূর্ত্তিগুলি টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে দেওয়া হবে| বেশ্যাবৃত্তি করে য়ে অর্থ শমরিয়া রোজগার করেছিল তাও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হবে| আমি তার সব ভ্রান্ত দেবদেবীর মূর্ত্তিগুলো ধ্বংস করব| কিন্তু কেন? কারণ আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে শমরিয়া তার ধন লাভ করেছে| তাই আমার প্রতি অবিশ্বস্ত লোকেরাই আবার সেই সব নিয়ে নেবে| 8 যা ঘটবে তাতে আমি খুবই দুঃখিত হব| আমি জুতো এবং জামা-কাপড় ছাড়াই যাব| আমি শেয়ালের মতো উচ্চস্বরে চিত্কার করব; পাখির মতো শোক করব| 9 শমরিয়ার ক্ষতের কোন রকম আরোগ্য সম্ভব নয়| তার রোগ (পাপ) যিহূদাতে ছড়িয়েছে| আর তা আমার প্রজাদের দরজার কাছে এসে পৌঁছেছে| শেষে জেরুশালেমের সর্বত্র ছড়াচ্ছে| 10 একথা গাতে বোলো না| আক্কোতে কেঁদো না| বৈত্-লি-অফ্রার ধূলোয় নিজেকে গড়িয়ে দাও| 11 শাফীরে বসবাসকারী তোমরা নগ্ন ও লজ্জিত অবস্থায় রাস্তা পার হও| সাননে বসবাসকারী লোকেরা বাইরে আসবে না| বৈত্-এত্সলের শোক বিগ্রহ তোমাদের কাছ থেকে তার সম্মান নিয়ে নেবে| 12 ভালো খবর আসবার অপেক্ষায় থেকে মরোতের লোকেরা দুর্বল হয়ে গিয়েছিল| কিন্তু কেন? কারণ ঈশ্বরের, কাছে থেকে জেরুশালেম শহরের দরজায় কিছু খারাপ জিনিস নেমে আসছে| 13 হে লাখীশ কন্যা, তুমি রথের সঙ্গে একটি দ্রুতগামী ঘোড়া জুড়ে দাও| সিয়োনের পাপগুলো লাখীশেই আরম্ভ হয়েছিল| কিন্তু কেন? কারণ, তুমি ইস্রাযেলের পাপের পথই অনুসরণ করেছ| 14 সেজন্য তুমি বিদায়ী উপহারগুলো অবশ্যই মোরেষত্-গাত্কে দেবে| অক্য়ীবের বাড়ীগুলো ইস্রাযেলের রাজাদের প্রতারিত করবে| 15 তোমরা য়ারা মারেশাতে বাস করছ, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে একজন লোককে আনব| সেই লোকটি তোমাদের অধিকারের জিনিসগুলো নিয়ে নেবে| ইস্রায়েলের মহিমা (ঈশ্বর) অদুল্লমে আসবে| 16 সেজন্য নিজেদের চুল কেটে ফেল, মাথা টাক করে ফেল| কিন্তু কেন? কারণ তুমি সেই সমস্ত সন্তানদের জন্য কাঁদবে যাদের তুমি ভালোবাসো| তোমাদের চুল কেটে ফেল এবং ঈগলের মতো নিজেদের মাথা টাক করে ফেলে তোমাদের দুঃখপ্রকাশ করো| কিন্তু কেন? কারণ তোমাদের সন্তানদের তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে|
1 যারা পাপ করার পরিকল্পনা করে তাদের ক্লেশ হবে| ওই লোকেরা বিছানায় শুয়ে শুয়ে দুষ্ট পরিকল্পনাগুলি করে| তারপর সকালের আলো ফুটলে তারা সেই সব পরিকল্পনা অনুযায়ীকাজ করে| কিন্তু কেন? কারণটা সহজ, তারা য়েটা চাইছে সেটা করবার ক্ষমতা তাদের আছে| 2 মাঠগুলো তাদের দরকার হয, সেজন্য তারা সেগুলি নিয়ে নেয়| তাদের বাড়ির দরকার হয, তাই তারা সেগুলি নিয়ে নেয়| তারা কোন একটা লোককে ঠকিযে তার বাড়িটা নিয়ে নেয়, আবার একটা লোককে ঠকিয়ে তার জমি নিয়ে নেয়| 3 সেজন্য প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন: “দেখো, আমি এই পরিবারের বিরুদ্ধে অমঙ্গলের চিন্তা করছি| তোমরা নিজেদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হবে| তোমাদের অহঙ্কার করা বন্ধ হবে| কেন? কারণ, খারাপ সময় আসছে| 4 তখন লোকে তোমাদের বিষয়ে নিয়ে গান করবে| তারার এই দুঃখের গানটি গাইবে: “আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে! প্রভু আমাদের দেশ নিয়ে নিয়েছেন এবং অন্যদের তা দিয়েছেন| হ্যাঁ, তিনি আমার জমি আমার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছেন| প্রভু আমাদের জমিগুলি ভাগ করে শত্রুদের দিয়ে দিয়েছেন| 5 সেজন্য় আমরা আর জমি জরিপ করতে এবং তা প্রভুর লোকেদের মধ্য়ে ভাগ করে দিতে পারব না|”‘ 6 লোকেরা বলছে, “আমাদের ধর্মোপদেশ দিও না| আমাদের সম্বন্ধে ঐসব খারাপ বিষযগুলি বোলো না| কোন কিছু খারাপ আমাদের প্রতি ঘটবে না|” 7 কিন্তু হে যাকোবের বংশ, আমাকে অবশ্যই এই কথাগুলো বলতে হবে| তোমরা য়েসব খারাপ কাজ করেছো তার জন্য় প্রভু তাঁর ধৈর্য় হারিযে ফেলেছেন| য়দি তোমরা ঠিক ভাবে জীবনয়াপন করতে তাহলে আমি তোমাদের কাছে ভালো কথা বলতে পারতাম| 8 কিন্তু আমার প্রজাদের কাছে তারা য়েন শত্রুর মত| য়েসব লোকেরা তোমাদের সামনে দিয়ে পথ চলে, তাদের তাদের জামাকাপড় তোমরা চুরি করেছো| ওইসব লোকেরা ভাবে য়ে তারা নিরপদে আছে| কিন্তু তোমরা তাদের কাছে থেকে এমন জিনিস ছিনিযে নাও য়েন তারা য়ুদ্ধের বন্দী কযেদী| 9 তোমরা আমার লোকেদের স্ত্রীদের বিবাহ বিচ্ছেদ করিযেছ এবং তাদের আরামের গৃহ থেকে বের করে দিয়েছ| তাদের শিশুদের কাছ থেকে তোমরা আমার সম্পদ চিরকালের জন্য় কেড়ে নিযেছিলে| 10 ওঠো, চলে য়াও! এটা তোমাদের বিশ্রামের জায়গা নয| কারণ তোমরা এই জায়গাটিকে ধ্বংস করেছো! তোমরা একে অশুচি করেছো, সেজন্য় একে ধ্বংস করা হবে! সেটা এক ভযঙ্কর বিধ্বংসী কাণ্ড হবে! 11 এইসব লোকেরা আমার কথা শুনতে চায না, কিন্চু য়দি কোন লোক মিথ্য়া কথা বলতে আসে তখন কিন্তু তারা তাকে মেনে নেবে| তারা একজন মিথ্য়া ভাববাদীকে মেনে নেবে য়দি সে আসে এবং বলে, “ভবিষ্যতে সুসময আসছে, তখন দ্রাক্ষারস ও সুরার বাহুল্য হবে|” 12 হ্যাঁ, যাকোবের লোকেরা, আমি তোমাদের সকলকে একত্রিত করবো| আমি ইস্রাযেলের য়ুদ্ধে অবশিষ্ট জীবিত ব্য়ক্তিদের একত্রিত করে আনবো| য়েমন মেষদের মেষখোঁযাড় একত্রিত করা হয, মেষপাল য়েমন চরানোর মাঠে একত্রিত করা হয, সেইভাবেই আমি তাদের একত্রিত করবো, তখন জায়গাটি বহু লোকজনের কোলাহলে ভরে য়াবে| 13 তারপর “চূর্নকারী”ব্য়ক্তিটি পথ খুলে দেবে এবং তার লোকেদের সামনে য়াবে| তারা দরজাগুলো ভাঙবে এবং শহর ছেড়ে চলে য়াবে| তাদের রাজা তাদের সঙ্গে আগে আগে হাঁটবেন আর প্রভু তাঁর লোকেদের সামনে থাকবেন|
1 তখন আমি বললাম, “এখন যাকোব কুলের নেতারা এবং ইস্রাযেল জাতির শাসকরা শোন| তোমাদের জানা উচিত ন্যায় বিচার কি! 2 কিন্তু তোমরা বালোকে ঘৃণা কর এবং মন্দকে ভালোবাস! তোমরা লোকেদের চমড়া ছাড়িযে নাও, তাদের হাড় থেকে মাংস ছিঁড়ে নাও! 3 তামরা আমার লোকেদের ধ্বংস করছ!তোমরা তাঁদের চামরা তুলে নিচ্ছ এবং তাদের হাড়গোড় ভেঙ্গে দিচ্ছ| তোমরা মাংসের মতো তাদের হাড়গুলোকে কুচিয়ে পাত্রের মধ্যে রাখছ! 4 সেইজন্য তোমরাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে পারে; কিন্তু তিনি তোমাদের উত্তর দেবেন না| না, পিরভু তোমাদের কাছ থেকে তাঁর মুখ লুকোবেন| কিন্তু কেন? কারণ তোমরা অন্যায় কাজ করছ!” 5 কযেকজন মিথ্যুক ভাববাদীরা প্রভুর লোকেদের কাছে মিথ্য়ে কথা বলে| প্রভু ঐ ভাববাদীদের সম্বন্ধে এই কথা বলেছেন:“এই ভাববাদীরা তাদের উদর দ্বারা পরিচালিত হয| য়খন লোকেরা তাদের খেতে দেয তখন তারা শান্তির প্রতিশ্রুতি দেয| য়দি তারা না খাওয়ায় তারা যুদ্ধের প্রতিশ্রুতি দেয়| 6 সেইজন্যই অবস্থাটা তোমাদের কাছে রাতের অন্ধকারের মতো| ভবিষ্যতে কি ঘটবে তা তোমরা দেখতে পাও না| ঐ ভাববাদীদের ওপরে সূর্য় অস্ত গেছে; তাই ভবিষ্যতে কি ঘটবে তারা তা দেখতে পায না| সেইজন্য অবস্থাটা তোদের কাছে অন্ধকারের মতোই| 7 তাই ভাববাদীরা লজ্জিত| ভবিষ্যত্ বক্তারা লজ্জিত হবে| তারা আর কিছুই বলবে না| কেন? কারণ, ঈশ্বর তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না| 8 কিন্তু প্রভুর আত্মা আমাকে ক্ষমতা, ধার্মিকতা এবং শক্তি দেযে পরিপূর্ণ করেছেন| কেন? কারণ, আমি যাকোবকে তার সম্বন্ধে এবং ইস্রাযেলকে তার পাপগুলোর সম্বন্ধে বলতে পারি! 9 যাকোব কুলের নেতারা এবং ইস্রাযোলের শাসকরা, আমার কথা শোন! তোমরা জীবনযাপনের সঠিক পথকে ঘৃণা কর! যদি কোন জিনিস সোজা থাকে তখন তোমরা তাকে বেঁকিয়ে দাও! 10 সাধারণ লোকেদের হত্যা করে তোমরা সিযোন গেঁথে তোল! তোমরা রক্তপাত ঘটিযে জেরুশালেম গড়ো| 11 আদালতে কে জিতবে তা ঠিক করার জন্য জেরুশালেমের য়াজকরা ঘুষ নিযে তাদের সাহায্যকরে| জেরুশালেমের যাজকরা শিক্ষা দেয কারণ তারা তার জন্য বেতন পায| আর ভাববাদীরা টাকা পয়সার জন্য ভবিষ্যত্ সম্বন্ধে বলো| তারপর ঐ নেতারা প্রভুর সাহায্য আশা করে| তারা বলে: “প্রভু এখানে আমাদর সঙ্গে আছেন, তাই অমঙ্গল কিছুই আমাদের প্রতি ঘটবে না|” 12 নেতারা, চোমাদের জন্য়ই সিযোন ধ্বংস হবে| জায়গাটা লাঙল চাষা মাঠে পরিণত হবে| জেরুশালেম পাথরের স্তূপে পরিণত হবে| জেরুশালেম পাথরের স্তূপে পরিণত হবে| য়ে পর্বতে মন্দির ছিল সেটা কেবল ঝোপ জঙ্গলে ভরে য়াবে|”
1 শেষের দিনগুলোতে, প্রভুর মন্দিরের পর্বতটি অন্য় আর সনস্ত পর্বতের চোযে উঁচু হয়ে উঠবে| প্রবাহের মত সেখানে অনেক লোক য়েতে থাকবে| 2 সমস্ত জাতির লোকেরা সেখানে য়াবে| তারা বলবে, “এসো! চলো যাকোবের ঈশ্বরের মন্দিরে যাওয়া য়াক| তখন ঈশ্বর তাঁর জীবনয়াপনের শিক্ষা আমাদের দেবেন এবং আমরা তাঁকে অনুসরণ করব|” ঈশ্বরের বিধিগুলি, হ্যাঁ, প্রভুর বার্তা জেরুশালেমে সিযোন পর্বতের ওপরেই শুরু হবে এবং পৃথিবীর সব জায়গায় ছড়িয়ে যাবে| 3 তখন ঈশ্বর সমগ্র জাতির বিচার হবেন| তিনি দূর দেশের বহু মানুষের যুক্তি-তর্কের সমাপ্তি ঘটবেন| ওই লোকেরা যুদ্ধের জন্য অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করবে| লোকেরা অন্যের সঙ্গে লড়াই করা বন্ধ করবে আর কখনই যুদ্ধের জন্য অনুশীলন করবে না| 4 প্রত্যেকটি লোক তার দ্রাক্ষা এবং ডুমুর গাছের নীচে বসবে| কেউ তাদের দেখবে না| কেন? কারণ, সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন এমনটাই ঘটবে! 5 অন্যান্য সব জাতির লোক তাদের নিজের নিজের দেবতাকে অনুসরণ করে; কিন্তু আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে চিরকাল, অনন্তকাল ধরে অনুসরণ করব! 6 প্রভু, “জেরুশালেম আঘাত পেয়েছিল এবং পঙ্গু হযে গিয়েছিল| জেরুশালেমকে আঘাত করা হযেছিল এবং পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু আমি তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনবো| 7 ঐ “পঙ্গু” শহরের লোকেরাই অবশিষ্ট থাকবে| ওই শহরের লোকেদের জোর করে শহর ছেড়ে য়েতে বাধ্য করা হয়েছিল; কিন্তু আমি তাদের একটি শক্তিশালী জাতিতে পরিণত করব|” প্রভুই তাদের রাজা হবেন| তিনি সিয়োন পর্বত থেকে চিরকাল তাদের শাসন করবেন| 8 তোমরা, য়ারা পালকসকলের দূর্গ, তোমাদের সময় আসবে| সিয়োনের পাহাড় ওফেল, তুমিই আবার কর্তৃত্বকারীর আসন হয়ে উঠব| হ্যাঁ, আগেকার মতো জেরুশালেমই আবার রাজত্বের স্থান হবে|” 9 এখন, কেন তোমরা উচ্চস্বরে কাঁদছো? তোমাদের রাজা কি চলে গেছেন? তোমরা কি তোমাদের নেতাকে হারিযেছো? তোমরা প্রসবকারী স্ত্রীলোকের মতো যন্ত্রনা পাচ্ছ| 10 সিয়োন কন্যা, যন্ত্রণা অনুভব কর| তোমার ‘শিশুকে জন্ম দাও| তোমাদের অবশ্যই এই শহরের (জেরুশালেম) বাইরে য়েতে হবে| তোমাদের মাঠে বাস করতে হবে| আমি বলতে চাইছি তোমরা বাবিলে য়াব| কিন্তু তোমরা ঐ জায়গা থেকে রক্ষা পাবে| প্রভু সেখানে য়াবেন এবং তোমাদের উদ্ধার করবেন| তিনি তোমাদের শত্রুদের কায় থেকে দুরে নিযে য়াবেন| 11 বহু জাতি তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য় এসেছে| তারা বলছে, “ওকে অপবিত্র হতে দাও, আমাদের দৃষ্টি সিয়োনের উপর পড়ুক!” 12 ওই লোকেদের নিজ নিজ পরিকল্পনা আছে কিন্তু তারা জানে না প্রভু কি পরিকল্পনা করছেন| একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে এই জনসাধারণকে প্রভু এখানে এনেছেন| শস্যকে য়েভাবে তার মাড়ানোর জায়গায় আছাড়ানো হয়, সেইভাবেই ওই লোকেদের পিষে ফেলা হবে| 13 “সিয়োন কন্যা, ওঠো এবং ওই লোকেদর পিষে ফেল! আমি তোমাকে খুবই বলবান করব| দেখে মনে হবে, তোমাদের লোহার শিং এবং পিতলের ক্ষুর রযেছে| তুমি বহু লোককে টুকরো টুকরো করে মারবে| তুমি প্রভুর কাছে তাদের সম্পদ আনবে|”
1 এখন, ওহে শক্তিশালী শহর, তোমাদের সৈন্যদের একত্রিত কর| তারা তাদের লাঠি দিয়ে ইস্রাযেলের বিচারকের গালে আঘাত করবে| 2 কিন্তু বৈত্লেহম-ইফ্রাথা, তুমি যিহূদার সবচেয়ে ছোট শহর| তোমার পরিবার গোনার পক্ষে খুবই ছোট| কিন্তু আমার জন্য়ে “ইস্রাযেলের শাসক” তোমার মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবে| তার উত্পত্তি প্রাচীনকাল থেকে বহু প্রাচীনকাল থেকে| 3 অতএব যতদিন না ঐ স্ত্রীলোকটি তার শিশু, প্রতিশ্রুত রাজাকে জন্ম দেয় ততদিন প্রভু তাঁর লোকেদের ছেড়ে দেবেন| তাদের বাকি ভাইয়েরা ইস্রায়েলের লোকেদের কাছে ফিরে আসবে| 4 তারপর ইস্রায়েলের শাসক প্রভুর শক্তির ওপর এবং প্রভু, তার ঈশ্বরের চমত্কার নামের ওপর নির্ভর করবে ও তার মেষের পালকে খাওয়াবে| সেখানে শান্তি থাকবে| কারণ সেই সমযে তাঁর মহিমা পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্য়ন্ত পৌঁছবে| 5 সেখানে শান্তি বিরাজ করবে| হ্যাঁ, অশূরীয় সৈন্যরা আমাদের দেশ আক্রমণ করবে এবং আমাদের দূর্গগুলিকে পদদলিত করবে| কিন্তু ইস্রাযেলের শাসক সাতজন মেষপালক ও আটজন নেতা মনোনীত করবেন| 6 তারা একটি তরবারি দিয়ে অশূরীয়দের শাসন করবে| তারা তরবারি হাতে নিয়ে নিম্রোদের দেশ শাসন করবে| ওই লোকেদের শাসন করার জন্য তারা তরবারি ব্যবহার করবে| তখন ইস্রায়েলের শাসক আমাদের সেই অশূরীয়দের হাত থেকে রক্ষা করবেন; য়ারা আমাদের দেশকে পদদলিত করতে আসবে| 7 তখন যাকোব পরিবারে বেঁচে থাকা লোকেরা বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে| তারা হবে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা শিশির বিন্দুর মত য়া কারো ওপর নির্ভর করে না| তারা হবে ঘাসের উপর পড়া বৃষ্টির মতো য়ার কারো জন্য অপেক্ষা করার প্রযোজন হয না| 8 জাতিগণের মধ্যে যাকোব পরিবারের অবশিষ্টাংশ য়ারা, তারা অরণ্যে বন্য জন্তুদের মধ্যে সিংহের মত হবে| মেষপালের মধ্যে য়ুব সিংহ য়েমন তাদের তেমনই দেখাবে| য়খন সিংহ তাদের মধ্য দিয়ে যায় তখন সে তার যেখানে খুশী হয সেখানে যায়| সে য়দি কোন পশুকে আক্রমণ করে তবে কেউ সেই পশুকে রক্ষা করতে পারবে না| অবশিষ্টাংশের অবস্থাও ঐরকমই হবে| 9 তোমরা তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে তোমাদের হাত তুলবে এবং তাদের ধ্বংস করবে| 10 প্রভু বলেছেন, “সেই সমযে, আমি তোমাদের ঘোড়াগুলোকে নিযে নেব এবং তোমাদের রথগুলো ধ্বংস করব| 11 তোমাদের রাজ্য়ের শহরগুলিকে আমি ধ্বংস করব| আমি তোমাদের দুর্গগুলি উপড়ে ফেলব| 12 তোমরা আর কোন য়াদু দেখানোর চেষ্টা করবে না| ভবিষ্যত্ বলার জন্য়ে তোমরা আর বেশী কাউকে পাবে না| 13 তোমাদের মূর্ত্তিগুলো য়েগুলো তোমরা ভুলভাবে খচিত করেছে সেগুলো আমি ধ্বংস করব| তোমাদের মূর্ত্তিগুলোকে মনে রাখবার জন্য় য়ে পাথরগুলোকে খাড়া করেছ সেগুলো আমি ভেঙ্গে চুরমার করে দেব| তোমাদের হাতে গড়া আর কোন জিনিসই তোমরা পূজা করবে না| 14 পূজার নিমিত্ত আশেরার খুঁটিগুলোকে আমি ধ্বংস করব| আমি তোমাদের শহরগুলি ধ্বংস করব| 15 কিছু জাতি আমাকে মানতে অস্বীকার করে| তাই ঐ জাতিগুলির বিরুদ্ধে আমি আমার ক্রোধ দেখাব এবং প্রতিশোধ নেব|”
1 এখন শোন প্রভু কি বলেন: পর্বতগুলোকে তোমার দিকের ব্যাপারগুলো বল| পাহাড়গুলো তোমাদের গল্প শুনুক| 2 তাঁর নিজের লোকেদের বিরুদ্ধে প্রভুর একটি অভিয়োগ আছে| ওহে পর্বতরা, তোমরা প্রভুর অভিয়োগ শোন| পৃথিবীর ভিত্তি সকল তোমরা প্রভুর কথা শোন| তিনি প্রমাণ করবেন য়ে, ইস্রাযেল ভুল করছে| 3 প্রভু বলেন, “আমার লোকেরা, আমাকে বলো আমি কি করেছি! আমি কি তোমাদের বিরুদ্ধে কোন ভুল কাজ করেছি? আমি কি তোমাদের জীবনকে খুব কঠিন করে তুলেছি? উত্তর দাও! 4 আমি য়ে কাজগুলো করেছি তা তোমাদের বলবো! আমি তোমাদের কাছে মোশি, হারোণ এবং মরিয়মকে পাঠিয়েছিলাম| মিশর দেশ থেকে আমি তোমাদের নিয়ে এসেছিলাম, তোমাদের দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছিলাম| 5 হে আমার লোকেরা, মোযাবের রাজা বালাকের মন্দ পরিকল্পনাগুলির কথা মনে কর| মনে কর, বিয়োরের পুত্র বিলিয়ম বালাককে কি বলেছিল| আকাসিযা থেকে গিল্গলের মধ্যে কি সব ঘটেছিল তা মনে কর| ওই ব্যাপারগুলো মনে কর তাহলে তোমরা জানবে, প্রভুই ন্যায়!” 6 প্রভুর সঙ্গে দেখা করতে আসার সমযে আমাকে কি আনতে হবে? উর্দ্ধস্থ ঈশ্বরকে নত হযে প্রণাম করার সময আমাকে কি করতে হবে? আমি কি প্রভুর কাছে হোমবলি নিবেদন করবার জন্য় এক বছরের গোবত্স নিযে আসব? 7 1,000 মেষ এবং 10,000 তেলের নদী পেয়ে কি প্রভু খুশী হবেন? আমার আত্মার জন্য পাপ নৈবেদ্য হিসেবে আমি কি আমার প্রথম সন্তানকে বলি দেব? আমার দেহের ফল, আমার সন্তানকে কি আমার আত্মার মূল্যস্বরূপ পাপ নৈবেদ্য দেওয়া উচিত্? 8 ওহে মানুষ, প্রভু তোমাদের বলেছেন ভালো বলতে কি বোঝায| সেইটিই প্রভু তোমাদের কাছ থেকে চাইছেন: অন্যান্য লোকেদের সঙ্গে ন্যায় আচরণ কর| দয়া এবং আনুগত্য ভালবাসো| তোমাদের ঈশ্বরের সঙ্গে নম্রভাবে বাস কর| 9 প্রভুর রব শহরকে ডাক দিল| জ্ঞানী ব্যক্তিরা প্রভুর নামকে সম্মান করে| তাই, শাস্তির দণ্ডের প্রতি এবং যিনি দণ্ডটি ধরে থাকেন তাঁর প্রতি মনোয়োগ দাও| 10 খারাপ লোকেরা কি এখনও চুরি করা মূল্যবান জিনিসপত্র লুকিয়ে রাখছে? সেই খারাপ লোকেরা কি এখনও খুব ছোট্ট টুকরী দিয়ে লোক ঠকাচ্ছে? হ্যাঁ! ঐসব ঘটনা এখনও ঘটছে! 11 এইসব লোকেদের কি আমার ক্ষমা করা উচিত, য়ারা চুরি করে এবং লোকেদের প্রতারিত করে? য়ারা এখনও লোকেদের ভুল থলি ও ভুল মাপনযন্ত্র দিয়ে প্রতারিত করে তাদের কি আমার ক্ষমা করা উচিত্? না! 12 ওই শহরের ধনী ব্যক্তিরা এখনও নিষ্ঠুর| ওই শহরের লোকেরা মিথ্যা কথা বলে! হ্যাঁ, ওরা প্রতারণাপূর্ণ কথা বলে! 13 সেজন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেওয়া শুরু করেছি| তোমাদের পাপের জন্য আমি তোমাদের ধ্বংস করব| 14 তোমরা খাবে, কিন্তু তোমাদের পেট ভরবে না| তোমরা ক্ষুধার্ত এবং খালি অবস্থায় থাকবে| তোমরা লোকেদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনার চেষ্টা করবে| কিন্তু তোমরা য়াদের রক্ষা করবে, লোকে তাদেরই তরবারির আঘাতে মেরে ফেলবে| 15 তোমরা তোমাদের বীজ বপন করবে; কিন্তু তোমরা খাদ্য় সংগ্রহ করতে পারবে না| তোমরা তোমাদের জলপাই পিষে তেল বের করার চেষ্টা করবে, কিন্তু কোন তেল পাবে না| তোমরা তোমাদের দ্রাক্ষা দলাবে কিন্তু মিষ্টি দ্রাক্ষারস পান করার জন্য় পর্য়াপ্ত রস সংগ্রহ করতে পারবে না! 16 কেন? কারণ তোমরা অম্রির বিধি মান্য করেছিলে, আহাবের পরিবার য়েসব খারাপ কাজ করে, তোমরা সেইসব খারাপ কাজ করে থাক| তোমরা তাদের শিক্ষামালা অনুসরণ করে থাক| সেজন্য় আমি তোমাদের ধ্বংস হতে দেব| লোকেরা এতই অবাক হবে য়ে শিস দেবে য়খন দেখবে তোমাদের শহর ধ্বংস হচ্ছে| তখন তোমরা আমার লোকেদের লজ্জা বহন করবে|
1 আমি মানসিকভাবে বিপর্য়স্ত কারণ আমি য়েন গাছ থেকে পেড়ে নেওয়া ফলের মতো, য়েসব দ্রাক্ষাগুলো গাছ থেকে তোলা হযে গেছে ঠিক তাদের মতো| খাবার জন্য কোন দ্রাক্ষা সেখানে নেই| যা আমি ভালোবাসি সেই নতুন গজানো ডুমুর পর্য়ন্ত নেই| 2 আমি বলতে চাইছি, সব বিশ্বাসী লোকেরা চলে গেছে| এই দেশে আর কোন ভাল লোক পড়ে নেই| প্রত্যেক লোক অপরকে হত্য়া করার জন্য় অপেক্ষা করছে| প্রত্যেক ব্যক্তি তার ভাইকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে| 3 লোকেরা এখন দুহাতেই খারাপ কাজ করতে দক্ষ| উঁচু পদস্থ কর্মচারীরা এখন ঘুষ চাইছে| বিচারকরা আদালতে তাদের মত পরিবর্তনের জন্য টাকা নিচ্ছে| ‘গণমান্য় নেতারা’ ভালো এবং ন্যায় মতামত দেয় না| তারা য়া কিছু ইচ্ছা করে সেটাই করছে| 4 এমনকি তাদের মধ্যে য়ে সবচেয়ে ভাল সেও জট পাকানো কাঁটা ঝোপের চেয়ে অনেক বেশী প্যাঁচালো|ভাববাদীরা বলেছিল য়ে এই দিনটি আসবে; তোমাদের পাহারাদারদেরদিন এসে গেছে| এখন তোমরা শাস্তি পাবে! এখন তোমরা বিভ্রান্ত হযে য়াবে! 5 তোমাদের প্রতিবেশীকে বিশ্বাস করো না! বন্ধুকে বিশ্বাস করো না! এমনকি তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে ও খোলাখুলিভাবে কথা বলো না! 6 নিজের বাড়ীর লোকেরাই মানুষের শত্রু হবে| পুত্র তার পিতাকে সম্মান করবে না| কন্যা তার মাতার বিরুদ্ধে যাবে| একজন বধূ তার শ্বাশুড়ীর বিরুদ্ধে য়াবে| 7 সেজন্য আমি সাহায্য পাবার জন্য প্রভুর দিকে তাকাবো! আমি রক্ষা পাবার জন্য আবার ঈশ্বরের অপেক্ষা করবো! আমার ঈশ্বর আমার কথা শুনবেন| 8 আমার পতন হযেছে| কিন্তু শত্রু আমাকে নিয়ে উপহাস করো না! আমি আবার উঠবো| এখন আমি অন্ধকারে বসে আছি| কিন্তু প্রভু আমার জন্য আলোকস্বরূপ হবেন| 9 প্রভুর বিরুদ্ধে আমি পাপ করেছিলাম| তাই তিনি আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হযেছিলেন| কিন্তু তিনি আদালতে আমার জন্য আমার মামলায় তর্ক করবেন| তিনি আমায় নির্দোষ প্রমাণ করবেন এবং আমাকে আলোয় নিয়ে আসবেন| আমি তাঁর ন্যায়পরায়ণতা দেখব| 10 আমার শত্রুরা এটা দেখে লজ্জিত হবে| কারণ আমার সেই শত্রুরা আমাকে বলেছিল, “তোমার প্রভু ঈশ্বর কোথায়? আমি তাকে নিয়ে মজা করব| রাস্তার কাদার মতো লোকেরা তার ওপর দিয়ে হেঁটে য়াবে| 11 সময আসবে য়খন তোমার দেওয়ালগুলো আবার গেঁথে তোলা হবে| সেই সমযে, দেশের সীমা দূরে যাবে বা পরিধি বাড়বে| 12 তোমার লোকেরা তোমার দেশে ফিরে আসবে| তারা অশূর থেকে এবং মিশরের শহরগুলি থেকে ফিরে আসবে| তোমার লোকেরা মিশর এবং ফরাত্ নদীর ওপার থেকে আসবে| তারা পশ্চিম দিকের সমুদ্র হতে এবং পূর্বদিকের পর্বত হতে আসবে| 13 দেশের অধিবাসীরা দেশে বাস করে তাদের মন্দ কাজের দ্বারা দেশ ধ্বংস করছে| 14 অতএব দণ্ড দিয়ে তোমার লোকজনদের শাসন কর| শাসন কর তোমাদের অধিকারভুক্ত লোকজনদের| সেই পাল একাকী কর্ম্মিল পর্বতের মধ্য়বর্তী বনে বাস করছে| সেই পাল আগে য়েমন বাশন এবং গিলিয়দে বাস করত এখনও সেই দুটি জায়গাতেই বাস করছে| 15 আমি যখন তোমাদের মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছিলাম তখন অনেক অলৌকিক কাজ করেছিলাম| আমি ওইরকম আরো অনেক অলৌকিক ঘটনা তোমাদের দেখাবো| 16 বহুজাতির লোকেরা সেই অলৌকিক ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষ করবে এবং তারা লজ্জিত হবে| তারা প্রত্যক্ষ করবে য়ে তাদের ‘শক্তি’ আমার তুলনায় কিছুই নয়| তারা অবাক হয়ে যাবে এবং তাদের মুখে হাত দেবে| তারা কিছুই শুনতে চাইবে না| 17 সাপের মতো তারা ধূলোতে বুকে ভর দিয়ে য়াবে| তারা ভয়ে কাঁপবে| তারা কীট পতঙ্গদের মতো তাদের গর্ত থেকে মাঠে বেরিয়ে আসবে এবং আমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে এসে তারা তোমাদের ভয় ও সম্মান করবে! 18 তোমার মতো ঈশ্বর আর কোথাও নেই| তুমি লোকেরা অপরাধ হরণ কর| য়েসব লোক বেঁচে গেছে তাদের ঈশ্বর ক্ষমা করেন| তিনি চিরকালের জন্য রাগ করে থাকবেন না| কারণ তিনি বিশ্বস্ত থাকতে ইচ্ছা করেন| 19 প্রভু আবার ফিরে আসবেন এবং আমাদের আরাম দেবেন| তিনি আমাদের অপরাধ চূর্ণ করে দেবেন এবং আমাদের সমস্ত পাপ গভীর সমুদ্রের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন| 20 ঈশ্বর যাকোবের প্রতি অটল থাকবেন| দযা করে আপনি আপনার দয়া অব্রাহামকে দেখান য়েমনটি আপনি বহু আগে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন|
1 এই বইটিতে ইল্কোশীয় নহূমের দর্শন রয়েছে| নীনবী শহরের সম্বন্ধে এটা এক দুঃখজনক বার্তা| 2 প্রভু হচ্ছেন ঈর্ষাপরাযণ ঈশ্বর| প্রভু দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেন| শত্রুদের ওপর তাঁর ক্রোধ বজায় থাকে| 3 প্রভু ধৈর্য়্য়শীল| কিন্তু তিনি খুবই শক্তিশালী! প্রভু দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেবেন| তিনি তাদের মুক্ত হয়ে চলে য়েতে দেবেন না| প্রভু খারাপ লোকদের শাস্তি দেবার জন্য আসছেন|তিনি তাঁর ক্ষমতা দেখাবার জন্য ঘূর্নী হাওয়া এবং ঝড় ব্যবহার করবেন| প্রভু মেঘমালার ওপর দিয়ে হাঁটেন! 4 প্রভু সমুদ্রের সঙ্গে রূঢ়ভাবে কথা বলবেন এবং তা শুকিয়ে যাবে| তিনি সমস্ত নদীগুলিকে শুকিয়ে দেবেন! কর্মিল এবং বাশনের উর্বর জমিগুলি ধীরে ধীরে শুকনো এবং অনুর্বর হয়ে যাবে|লিবানোনের ফুলগুলি শুকিয়ে ঝরে যাবে| 5 প্রভু আসবেন, আর পর্বতগুলি ভয়ে আন্দোলিত হবে এবং উপপর্বতগুলি গলে যাবে| প্রভু আসবেন এবং পৃথিবী ভয়ে কাঁপবে| পৃথিবী এবং পৃথিবীস্থ প্রত্যেকটি লোক ভয়ে কাঁপবে| 6 কোন লোকই প্রভুর ভয়ঙ্কর ক্রোধের সামনে দাঁড়াতে পারবে না| তাঁর ক্রোধের ভযাবহতা কেউ সহ্য করতে পারবে না| তাঁর ক্রোধ আগুনের মতো জ্বলবে| যখন তিনি আসবেন তখন পাথরগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে| 7 প্রভু মঙ্গলময়, সঙ্কটের সময় আশ্রয়ের জন্য তিনিই নিরাপদ স্থান| য়ে সব লোক তাঁর ওপর আস্থা রাখে তিনি তাদের যত্ন নেন| 8 কিন্তু তিনি সম্পূর্ণরূপে তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করবেন| বন্যার মত তিনি তাদের ধুয়ে দেবেন| তিনি তাঁর শত্রুদের অন্ধকারে তাড়িয়ে দেবেন| 9 প্রভুর বিরূদ্ধে তোমরা কেন ষড়য়ন্ত্রের পরিকল্পনা করছ? তিনি একেবারে ধ্বংস করে দেবেন, তাই দ্বিতীয় বারের জন্য আর বিপদ আসবে না| 10 তোমরা একটি পাত্রের নীচে পুড়ছে এমন একটি কাঁটাঝোপের মত সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হবে| শুকনো আগাছাগুলি য়ে ভাবে তাড়াতাড়ি আগুনে পুড়ে যায়, সেই ভাবেই তোমরা খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস হবে| 11 অশূরীয়, এক জন ব্যক্তি তোমার কাছ থেকে এসেছে| সে প্রভুর বিরূদ্ধে অন্যায় ষড়যন্ত্র করেছিল এবং খারাপ উপদেশ দিয়েছিল| 12 ঈশ্বর যিহূদাকে এই কথাগুলি বলেছিলেন: অশূরীয়র লোকদের পুরো সামরিক শক্তি আছে| তাদের বহু সৈন্য আছে কিন্তু তাদের সবাইকে কেটে ফেলা হবে| তারা সবাই শেষ হয়ে যাবে| আমার লোকরা, আমি তোমাদের যন্ত্রণা দিচ্ছি, কিন্তু আমি তোমাদের আর কষ্ট ভোগ করতে দেব না| 13 এখন আমি অশূরীয় ক্ষমতা থেকে তোমাদের সবাইকে মুক্তি দেবো| আমি তোমাদের কাঁধ থেকে সেই য়োয়াল সরিয়ে দেবো য়ে শৃঙ্খলগুলি তোমাদের ধরে রেখেছে সেগুলি আমি ছিঁড়ে ফেলব| 14 হে অশূরের রাজা, প্রভু তোমার সম্বন্ধে এই আদেশ দি.যেছেন; তোমার নাম ধরে রাখবার জন্য একজন উত্তরপুরুষ তুমি পাবে না| আমি তোমার মন্দিরে খোদাই করা মূর্তি এবং ধাতব মূর্তিগুলি ধ্বংস করে দেবো| আমি তোমার জন্য কবর তৈরী করছি| কারণ শীঘ্রই তোমার শেষ সময় আসছে| 15 যিহূদা, দেখো ওদিকে দেখো, পর্বতগুলোর ওপর দিয়ে এক জন আসছে সুসমাচার নিয়ে এক জন বার্তাবাহক আসছে সে বলছে, ওখানে শান্তি রয়েছে যিহূদা তুমি তোমার বিশেষ উত্ সবের দিনগুলো পালন করো যিহূদা য়ে কাজগুলি তুমি করবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলে সেগুলো করো ঐ খারাপ লোকরা আবার এসে তোমাকে আক্রমণ করবে না কারণ সেই সব খারাপ লোকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে!
1 একজন শত্রু তোমাকে আক্রমণ করার জন্য আসছে| সেজন্য তোমার শহরের শক্ত জায়গাগুলিকে পাহারা দাও| রাস্তায় নজর রাখো| যুদ্ধের জন্য তৈরী হও| সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হও! 2 হ্যাঁ, প্রভু যাকোবের মাহাত্ম্য় পাল্টে দেবেন| তার শ্রী ইস্রায়েলের মতোই হবে| শত্রুরা তাদের ধ্বংস করেছে এবং তাদের দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি ধ্বংস করেছে| 3 ঐসব সৈন্যদের বর্মগুলো লাল| তাদের উর্দিগুলো উজ্জ্বল লাল| তাদের রথগুলো যুদ্ধের জন্য সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং আগুনের শিখার মতো চক্ চক্ করছে এবং তাদের ঘোড়াগুলো যাবার জন্য প্রস্তুত| 4 রথগুলো রাস্তার ওপর উন্মত্তের মত এগোচ্ছে| প্রশস্ত জায়গায় তারা হুড়োহুড়ি করে সামনে পেছনে যাচ্ছে| তাদের জ্বলন্ত মশালের মতো চক্ চকে দেখাচ্ছে| এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় বিদ্য়ুতের মতো ঝলসে উঠছে! 5 শত্রু পক্ষ তার সব থেকে ভালো সৈন্যদের ডাকছে| কিন্তু দৌড়ে য়েতে গিয়ে তারা হোঁচট খাচ্ছে| তারা প্রাচীরের দিকে দৌড়ে এবং অবরোধ যন্ত্র বসাচ্ছে| 6 কিন্তু নদীর ধারের দরজাগুলো খোলা রয়েছে এবং শত্রুরা এর মধ্যে দিয়ে বন্যার মত প্রবেশ করে রাজার বাড়ী ধ্বংস করছে| 7 এরা রাণীকে নিয়ে চলে যাচ্ছিল| তার ক্রীতদাসীরা ঘুঘু পাখীর মত দুঃখে বিলাপ করছিলো| দুঃখ বোঝাবার জন্য তারা তাদের বুক চাপড়াচ্ছিল| 8 নীনবীর অবস্থা জলাশযের মত, যার জল নর্দমা দিয়ে বয়ে চলে যাচ্ছে| জনসাধারণ তীব্রস্বরে গর্জন করছে, “থামো! পালিয়ে য়েও না!” কিন্তু তাতে কোন ভালো ফল হচ্ছ না? 9 সৈন্যরা, তোমরা যারা নীনবী ধ্বংস করেছো, তারা রূপো নিয়ে যাও, সোনা নিয়ে যাও নেবার অনেক কিছু আছে এখানে অনেক সম্পদ আছে| 10 এখন নীনবী শূন্য| সব জিনিষই চুরি হয়ে গেছে| শহরটি ধ্বংস হয়েছে| জনসাধারণ তাদের সাহস হারিয়েছে| তাদের হৃদয় ভয়ে গলে যাচ্ছে, তাদের হাঁটুগুলো ঠক-ঠক শব্দে কাঁপছে| তাদের শরীর কাঁপছে, তাদের মুখ ভয়ে সাদা হয়ে গেছে| 11 সিংহের গুহাস্বরূপ নীনবী এখন কোথায যেখানে পুরুষ এবং স্ত্রী-সিংহরা থাকত? তাদের শিশুরা ভয় পেত না| 12 সিংহ (নীনবীর রাজা) তার বাচ্চাদের এবং সিংহকে খাওয়াবার জন্য বহু লোক হত্যা করেছে| সে তার গুহা (নীনবী) মনুষ্যদেহ দিয়ে ভরে দিয়েছিল| য়ে নারীদের সে হত্যা করেছিল তাদের দেহগুলি দিয়ে তার গুহা পূর্ণ করেছে| 13 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, নীনবী, আমি তোমার বিরূদ্ধে! আমি তোমার রথগুলোকে বালিয়ে দেব| যুদ্ধে আমি তোমার সিংহ শাবকদের মেরে ফেলব| তুমি পৃথিবীতে কাউকে শিকার করতে সমর্থ হবে না| লোকরা আর কখনোই তোমার দূতদের কাছ থেকে কোন খারাপ খবর শুনবে না|
1 সেই খুনেদের শহরের পক্ষে এটা খুবই খারাপ হবে| নীনবী এমনই এক মিথ্যায় পূর্ণ শহর|অন্য দেশ থেকে নিয়ে আসা জিনিষ দিয়ে এ শহর ভর্তি করা হয়েছে| শহরটি হত্যা ও লুঠ করা থেকে কখনও বিরত হয় না| 2 তোমরা চাবুক মারার শব্দ, চাকার শব্দ, ঘোড়াদের টগবগিয়ে যাবার শব্দ এবং রথগুলোর লাফিযে যাবার শব্দ শুনতে পাচ্ছো| 3 অশ্বারোহী সৈন্যরা আক্রমণ করছে; তাদের তরবারিগুলো জ্বল-জ্বল করে উঠছে এবং তাদের বর্শাগুলো চকচক করছে! সেখানে অনেক মৃত মানুষের দেহ, মৃতদেহগুলি স্তুপীকৃত, এতগুলি দেহ য়ে গোনা যায় না| লোকরা মৃতদেহগুলির ওপর হোঁচট খেয়ে পড়ছে| 4 নীনবীর জন্যই এই সব কিছু ঘটেছে| নীনবী ঠিক য়েন বেশ্যার মতো য়ে কখনোই কিছু পাযনি| সে আরো আরো চেয়েছে| সে নিজেকে বহু জাতির কাছে বিক্রী করে দিয়েছিল| তার মাযাবী যাদু দিয়ে সে তাদের তার দাস বানিয়ে ফেলেছে| 5 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “নীনবী, আমি তোমার বিরূদ্ধে, আমি তোমার জামাকাপড় তোমার মুখের ওপর তুলে দেবো|আমি অন্য জাতিদের কাছে তোমার নগ্ন দেহ দেখাবো| ঐ রাজ্যগুলো তোমার লজ্জা দেখবে| 6 আমি তোমার ওপর নোংরা জিনিষ ছুঁড়ে দেবো| আমি তোমার সঙ্গে ঘৃণ্য আচরণ করবো| লোকে তোমাকে দেখে হাসবে| 7 তোমাকে দেখে প্রত্যেকেই চমকে উঠবে| তারা বলবে, ‘নীনবী ধ্বংস হয়েছে| কে তার জন্য কাঁদবে’ আমি জানি, নীনবী তোমাকে সান্ত্বনা দেবার জন্য কাউকে পাওয়া যাবে না|’ 8 নীনবী, তুমি কি নীল নদের কুলে অবস্থিত থীব্সের চেয়ে ভালো ? না| থীবসের চারিদিকেও জল ছিল| থীবস্ তার শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই জলই ব্যবহার করত| আত্মরক্ষার দেওয়ালের মত সে সেই জল ব্যবহার করত| 9 কূশ এবং মিশর থীব্সকে অনেক সামর্থ্য যুগিয়েছিল| সুদান এবং লিবীয়া তাকে সমর্থন করেছিল| 10 কিন্তু থীবস্ পরাজিত হয়েছিল| তার অধিবাসীদের বিদেশে কয়েদী হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| রাস্তার প্রত্যেক মোড়ে সৈন্যরা নীনবীর ছোট ছোট বাচ্চাদের মেরে ফেলেছিল| তারা ঘুঁটি চেলে দেখেছিল কোন্ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কারা ক্রীতদাস করে রাখবে| তারা থীবসের সব গণ্যমান্য ব্যক্তিদের শেকল দিয়ে বেঁধেছিল| 11 সেজন্য নীনবী মাতাল লোকদের মতো তোমারও পতন হবে| তুমি লুকোবার চেষ্টা করবে| শত্রুদের হাত থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য তুমি একটি নিরাপদ স্থান খুঁজবে| 12 কিন্তু নীনবী তোমার সমস্ত শক্তিশালী জায়গাগুলি ডুমুর গাছের মত হবে| নতুন ডুমুরগুলি যখন পাকে, এক জন লোক আসে আর গাছটিকে নাড়া দেয| ডুমুরগুলি সেই লোকটির মুখের মধ্যে গিয়ে পড়ে| সে সেগুলো খেয়ে ফেলে আর ডুমুরগুলো ঐখানেই শেষ| 13 নীনবী, তোমার সব লোক য়েন স্ত্রীলোকের মত এবং শত্রুপক্ষের সৈন্যরা তাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত| তোমাদের দেশের দরজাগুলো শত্রুদের ঢুকে পড়ার জন্য প্রশস্তভাবে খোলা| ফটকগুলির আড়াআড়ি কাঠের গরাদগুলো পুড়ে গিয়েছিল| 14 জল নিয়ে এসে তোমার নগরের ভেতর জমিযে রেখে দাও| কেন? কারণ শত্রুপক্ষের সৈন্যরা তোমার শহরের চারদিক ঘিরে ফেলবে| তারা কোন লোককে নগরের মধ্যে খাবার অথবা জল আনতে দেবে না| তোমার প্রতিরক্ষাগুলিকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলো| বেশি ইঁট বানানোর জন্য মাটি নাও| চূন, বালি, সুরকি মেশাও| ইঁট তৈরী করবার জন্য চুল্লী জোগাড় কর! 15 তোমরা শুধু এসব কাজই করতে পারো, কিন্তু আগুন তোমাদের সম্পূর্ণবূপে ধ্বংস করবে| এবং তরবারিই তোমাদের হত্যা করবে| তোমাদের দেশাকে এমন দেখাবে য়েন পঙ্গপালের ঝাঁক এসে সব খেয়ে নিয়েছে|নীনবী ফড়িংএর ঝাঁকের মত, পঙ্গপালের দলের মত বেড়ে চলেছিল| 16 বহু ব্যবসায়ী লোক তোমার কাছে আছে যারা নানা জায়গায় গিয়ে জিনিষ কেনে| তারা য়েন আকাশের নক্ষত্রের মত অসংখ্য়| তারা য়েন পঙ্গপালের মত, যারা খেতে আসে য়ে পর্য়ন্ত না সব শেষ হয়| তারপর তারা ছেড়ে যায়| 17 এবং তোমার সরকারী কর্মকর্তারাও পঙ্গপালের মত| তারা ঠাণ্ডার দিনে পাথরের দেওয়ালে বসা পঙ্গপালের মত| যখন সূর্য় উঠে পাথরগুলো গরম হয় তখন সব পঙ্গপালগুলো উড়ে যায় এবং কেউ জানে না তারা কোথায যায়! তোমার সরকারী কর্মচারীরাও ঠিক ঐরকম| 18 অশূরের রাজা, তোমার মেষপালকরা গভীরভাবে ঘুমিযে পড়েছে| সেইসব শক্তিশালী লোকরা ঘুমোচ্ছে এবং এখন তোমার মেষের দল (লোকরা) পর্বতের চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে| তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য কোন লোকই নেই| 19 নীনবী, তুমি খারাপভাবে আঘাত পেয়েছো| কোন কিছুই তোমার আঘাত সারাতে পারবে না| যারাই তোমার ধ্বংসের কথা শোনে, তারা হাততালি দেয| তারা সবাই খুশী| কেন? কারণ তুমি সব সময় য়ে সব ব্যথা দিয়ে থাকো তা তারা সবাই অনুভব করেছে!
1 এই বার্তাটি ভাববাদী হবক্কূককে দেওয়া হয়েছিল| 2 প্রভু, আমি আপনার কাছে চিত্কার করে ক্রন্দন করেই চলেছি| কখন আপনি আমার কথা শুনবেন? আমি অত্যাচারের বিষয় আপনার কাছে কেঁদেছিলাম| কিন্তু আপনি আমাকে সাহায্য করবার জন্য কিছুই করেননি| 3 লোকে জিনিস চুরি করছে এবং অন্যদের আঘাত করছে| জনসাধারণ তর্ক এবং মারামারি করছে| এই সব ভয়ঙ্কর জিনিস কেন আপনি আমাকে দেখাচ্ছেন? 4 বিধি দুর্বল এবং সেটা জনসাধারণের কাছে ন্যায়বিচার আনে না| অসত্ লোকরা ভালো লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয়| সেজন্য বিধি পক্ষপাতশূন্য নয়| ন্যায়বিচার আর জয়লাভ করছে না| 5 প্রভু উত্তর দিয়েছিলেন, “অন্যান্য জাতিগুলির দিকে তাকিযে দেখো| তাদের ভালোভাবে লক্ষ্য কর, তাহলে তুমি আশ্চর্য়্য় হয়ে যাবে| আমি তোমার জীবনকালে এমন কিছু করব যা তোমাকে বিস্মযাভিভূত করবে| সেটা বিশ্বাস করবার জন্য তোমাকে তা অবশ্যই দেখতে হবে| তোমাকে সে বিষয়ে কেউ বললে তোমার বিশ্বাস হবে না| 6 আমি বাবিলবাসীদের শক্তিশালী জাতিতে পরিণত করবো| ঐসব মানুষরা খুবই নীচ এবং শক্তিশালী য়োদ্ধা| তারা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে দাপিযে ঘুরে বেড়ায| অপরের ঘরবাড়ি ও শহরগুলি তারা অধিকার করে নেবে| 7 বাবিলে লোকরা অন্যান্য লোকদের ভয় দেখাবে| বাবিলবাসীরা যা চায তাই করবে এবং যেখানে য়েতে চাইবে সেই খানেই যাবে| 8 তাদের ঘোড়াগুলো চিতাবাঘের চেয়ে অনেক দ্রুতগামী হবে; সূর্য়াস্তের সময়ের নেকড়ের চেয়েও তারা বেশী নিষ্ঠুর হবে| তাদের ঘোড়সওযাররা অনেক দূরের দেশ থেকে আসবে| ক্ষুধার্ত ঈগল য়েমন আচমকা ছোঁ মেরে আকাশ থেকে নেমে আসে সেই রকম তারা তাদের শত্রুকে দ্রুত আক্রমণ করবে| 9 তারা সবাই একটি জিনিস চায, সেটা হচ্ছে, হিংসাত্মক কার্য়্য়কলাপ| মরুভূমির তীব্র হাওযার মতো তাদের সৈন্যরা দ্রুত কুচকাওযাজ করে যাবে| বাবিলের সৈন্যরা বালু কণার মত অসংখ্য লোককে বন্দী করে নেবে| 10 “বাবিল সৈন্যরা অন্য জাতির রাজাদের দেখে হাসবে| বিদেশী শাসকরা তাদের কাছে ঠাট্টার মতো মনে হবে| বাবিল সৈন্যরা শহরের লম্বা এবং শক্ত দেওয়াল দেখে হাসবে| সৈন্যরা উঁচু দেওয়ালের চূড়ো পর্য়ন্ত সহজেই মাটির রাস্তা তৈরী করে সহজেই শহরগুলিকে পরাস্ত করবে| 11 তারপর তারা অন্যান্য শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য বাতাসের মত এগিয়ে যাবে| একটি মাত্র বিষয় বা বাবিলীযরা উপাসনা করবে তা হল তাদের শক্তি|” 12 এর পর হবক্কূক বললেন, “প্রভু, আপনিই হচ্ছেন অনন্তকালীন জীবিত প্রভু| আপনিই আমার পবিত্র ঈশ্বর যিনি অমর| প্রভু, যা করা উচিত্ তাই করতে আপনিই বাবিলীযদের সৃষ্টি করেছেন| আমাদের শিলা, যিহূদাবাসীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য আপনি তাদের সৃষ্টি করেছেন| 13 আপনার চোখগুলি খুবই শুদ্ধ! আপনি কি করে মন্দের দিকে তাকাতে পারবেন? লোকরা য়ে পাপ করে তা আপনি সহ্য করতে পারেন না| তাহলে ঐ অসত্ লোকরা য়ে জয়ী হচ্ছে তা আপনি কি করে দেখবেন? আপনি যখন দেখেন য়ে ভালো লোকরা আমাদের চেয়েও দুষ্ট লোকদের দ্বারা পরাজিত হচ্ছে তখন কেন কোন প্রতিকার করেন না? 14 “আপনি মানুষকে য়েন সমুদ্রের মধ্যে মাছের মত তৈরী করেছেন| তারা য়েন নেতাবিহীন ছোট ছোট সামুদ্রিক জীব| 15 শত্রু বঁড়শি এবং জাল দিয়ে তাদের সবাইকে ধরছে| শত্রু তাদের জাল দিয়ে ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এবং শত্রু যা ধরছে তাতে খুবই খুশী| 16 তার জাল তাকে ধনী লোকের মতো জীবনধারন করতে এবং সব থেকে ভাল খাবার উপভোগ করতে সাহায্য করছে| সেজন্য শত্রু তার জালকে পূজো করে| তার জালকে সম্মান দেওয়ার জন্য উত্সর্গ আর ধূপ-ধূনো দেয| 17 সে কি জাল দিয়ে সম্পদ সংগ্রহ করার অভিযান চালিযে যাবে? সে কি কোন করুণা না করে লোককে ধ্বংস করে যাবে?
1 “আমি প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে থাকবো এবং লক্ষ্য রাখবো| প্রভু আমাকে কি বলবেন তা দেখার জন্য আমি অপেক্ষা করবো| তিনি কি ভাবে আমার প্রশ্নের উত্তর দেন তা জানবার জন্যে আমি অপেক্ষা করবো|” 2 প্রভু আমাকে উত্তর দিলেন, “আমি তোমাকে যা দেখাই তা লেখো| যাতে লোকরা সহজভাবে পড়তে পারে তার জন্য পরিষ্কার অক্ষরে লিখবে| 3 এই বার্তাটি ভবিষ্যতের এক বিশেষ সময়ের জন্য| এই বার্তাটি ভবিষ্যতের এক বিশেষ সময়ের জন্য| এই বার্তাটি সমাপ্তি সম্পর্কে| এটা সত্যিই ঘটবে| মনে হতে পারে য়ে সময়টা কখনও আসবে না| কিন্তু ধৈর্য়্য় ধরো এবং এর জন্য অপেক্ষা করো| সেই সময় আসবে, দেরী হবে না| 4 যারা শুনতে আগ্রহী নয়, তাদের এই বার্তাটি সাহায্য করবে না: কিন্তু য়ে ব্যক্তি ঠিক কাজ করে সে তার আনুগত্যের জন্য বেঁচে থাকে|” 5 ঈশ্বর বললেন, “মদ একজন লোককে বোকা বানাতে পারে| একই ভাবে, একজন শক্তিশালী লোকের গর্ব তাকে বোকা বানাতে পারে; কিন্তু সে শান্তি পাবে না| মৃত্যুর মত, সে কখনও সন্তুষ্ট থাকবে না| সে অন্যান্য জাতিদের পরাস্ত করার জন্য লড়াই চালিযে যাবে| সে ওই সব লোকদের বন্দী করে নিয়ে যাবার কাজ চালিযে যাবে| 6 কিন্তু খুব শীঘ্রই ওই সব লোকরা তাকে দেখে হাসবে| তারা তার পরাজিত হবার ব্যাপারটা গল্প করে বলবে| তারা হাসবে আর বলবে, হায়রে! মানুষটা এত কিছু জিনিস নিয়েও সেগুলি তার কাছে রাখতে পারবে না| সে ঋণ সংগ্রহ করে নিজেকে ধনী করে তুলেছিল| 7 “শক্তিশালী পুরুষ, তুমি লোকের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছ| এক দিন ওই লোকরা সচেতন হয়ে উঠবে এবং কি ঘটেছে তা বুঝতে পারবে| তখন তারা তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে| তখন তারা তোমার কাছ থেকে জিনিসপত্র নিয়ে নেবে এবং তুমি খুবই ভয় পেয়ে যাবে| 8 তুমি বহু জাতির কাছ থেকে জিনিস চুরি করেছ সেজন্য ওই লোকরা তোমার কাছ থেকে অনেক কিছু নিয়ে নেবে| তুমি বহু লোককে হত্যা করেছ| তুমি বহু জায়গা এবং শহর ধ্বংস করেছ| সেখানকার সব লোকদের হত্যা করেছ| 9 হ্যাঁ, অন্যায় কাজ করে য়ে ধনী হচ্ছে তার পক্ষে সেটা খুবই খারাপ হবে| সেই লোকটি নিরাপদ জায়গায় বাঁচার জন্য ওই কাজগুলি করছে| সে ভাবছে য়ে তার কাছ থেকে অন্য লোকদের চুরি করা সে বন্ধ করবে; কিন্তু তার ভাগ্যে খারাপ ঘটনাই ঘটবে| 10 “তুমি বহু লোককে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছ; কিন্তু ঐ সকল পরিকল্পনায তুমিই লজ্জিত হবে| তুমি অনেক মন্দ কাজ করেছ এবং তুমি তোমার জীবনটাকেই হারাবে| 11 পাথরের দেওয়ালগুলি তোমার বিরুদ্ধে চিত্কার করে উঠবে| এমনকি, তোমার নিজের বাড়ীর কাঠের ছাদের কড়ি-বরগাগুলোও স্বীকার করবে য়ে তুমি অন্যায় করেছ| 12 “য়ে নেতারা অন্যায় কাজ করে এবং নগর নির্মাণ করতে লোকদের হত্যা করে তাদের পক্ষে এটা খুবই খারাপ হবে| 13 সর্বশক্তিমান প্রভু ঠিক করেছেন য়ে এই লোকরা নির্মাণের জন্য য়ে কাজ করেছে তার সব কিছু আগুনে ধ্বংস করবেষ তাদের সব পরিশ্রম বৃথাই যাবে| 14 তখন প্রভুর মহিমার কথা সব জায়গার লোকরা জানতে পারবে| সমুদ্র থেকে জল য়েমন ছড়িয়ে যায় সেই রকম ভাবে এই খবরটাও চারিদিক ছড়িয়ে যাবে| 15 তোমরা যারা সুরাপান করিযে তোমাদের প্রতিবেশীদের মাতাল করে দাও তাদের খুব খারাপ পরিণতি হবে| রাগের চোটে তোমাদের প্রতিবেশীদের মাতাল করতে তোমরা তোমাদের দ্রাক্ষারস ঢেলে দাও যাতে তোমরা তাদের উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পাও| 16 “কিন্তু সেই লোকটি প্রভুর ক্রোধ কাকে বলে তা জানতে পারবে| সেই ক্রোধ প্রভুর ডান হাতের এক কাপ বিষের মতো| সেই লোকটি সেই ক্রোধের স্বাদ নেবে এবং মাতাল লোকের মতোই মাটির ওপর পড়ে যাবে|“অসত্ শাসক, তুমি সেই কাপ থেকে বিষ পান করবে| তুমি লজ্জা পাবে, সম্মান নয়| 17 তুমি লিবানোনে বহু লোককে আঘাত করেছো| তুমি সেখান থেকে বহু জীবজন্তু চুরি করেছো| তাই তুমি, যারা মারা গেছে সেই লোকদের কারণে এবং ঐ দেশে তুমি য়ে খারাপ কাজ করেছিলে তার জন্য ভয় পাবে| ওই শহরের প্রতি এবং সেখানে বসবাসকারী জনগণের প্রতি তুমি য়ে সব মন্দ কাজ করেছিলে তার জন্য তুমি ভীত হবে|” 18 সেই লোকটির ভ্রান্ত দেবতা তাকে সাহায্য করবে না| কারণ সেটা কেবল মূর্ত্তিই যা ধাতু দিয়ে মোড়া| এটা কেবল মাত্রই মূর্ত্তি| সে জন্য য়ে লোকটি মূর্ত্তি তৈরী করেছে সে মূর্ত্তির কাছ থেকে সাহায্য পাবার আশা করতে পারে না| সেই মূর্ত্তিটি কথাও বলতে পারে না| 19 এটা সেই লোকটির পক্ষে খুবই খারাপ হবে য়ে কাঠের মূর্ত্তিকে বলে, “উঠে পড়ো!” এটা লোকটির পক্ষে খুবই খারাপ হবে য়ে, য়ে পাথর কথা বলতে পারে না তাকে বলে, “জেগে ওঠো!” এসব জিনিস তাকে সাহায্য করতে পারবে না| সেই মূর্ত্তিটি হয়তো সোনা এবং রূপোর দ্বারা আবৃত হতে পারে কিন্তু সেই মূর্ত্তিতে কোন প্রাণ নেই| 20 কিন্তু প্রভু হলেন অন্য রকম! প্রভু তাঁর পবিত্র মন্দিরে আছেন| সে জন্য সমস্ত পৃথিবী নিস্তব্ধ হবে এবং প্রভুর সামনে সম্মান প্রদর্শন করবে|
1 শিগিযোনোতের ওপর ভাববাদী হবক্কূকের একটি প্রার্থনা. 2 প্রভু, আমি আপনার সম্বন্ধে শুনেছি| প্রভু, অতীতে আপনি য়ে শক্তিশালী কাজগুলো করেছেন তার সম্বন্ধে আমি অভিভূত হয়ে গেছি| এখন আমার প্রার্থনা এই য়ে, আপনি আমাদের এই সময়ও মহত্ কাজ করুন| অনুগ্রহ করে আমাদের এই বর্তমান কালেও আপনি ঐ কাজগুলো করুন| কিন্তু আপনার কাজের উত্তেজনার মধ্যে আমাদের কৃপা করবার কথাও মনে রাখবেন| 3 ঈশ্বর তৈমন পর্বত থেকে আসছেন| সেই পবিত্র জন পারণ পর্বত থেকে আসছেন|প্রভুর মহিমা স্বর্গকে আচ্ছাদন করে| তাঁর প্রশংসায় পৃথিবী পূর্ণ হয়| 4 তাঁর হাত থেকে তীব্র, উজ্জ্বল আলোর রশ্মির ছটা বেরিয়ে আসছে| সেই হাতের মধ্যে এক রকম ক্ষমতাও লুকিয়ে রয়েছে| 5 মহামারী তাঁর আগে আগে চলেছে এবং ধ্বংসকারীরা তাঁর পিছনে অনুসরণ করছে| 6 প্রভু দাঁড়িয়ে পৃথিবীর বিচার করলেন| তিনি সমস্ত জাতির লোকদের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং তাদের ভয়ে শিহরিত করলেন| বহু বছর ধরে য়ে পর্বতগুলো দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছিল; তারা টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে পড়েছে| বহু পুরানো পুরানো পাহাড়গুলো পড়ে গেল| ঈশ্বর সব সময় এই রকমই| 7 আমি কুশন শহরগুলিকে বিপত্তির মধ্যে দেখেছিলাম| মিদিয়নের দেশটি ভয়ে কাঁপছিল| 8 প্রভু, আপনি কি নদীগুলির উপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন? জলস্রোতের ওপর আপনি কি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন? সমুদ্রের প্রতি আপনি কি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন? আপনি যখন ঘোড়া এবং রথের ওপর চড়ে জয়ী হয়েছিলেন তখন আপনি কি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন? 9 আপনি আপনার কোষ থেকে ধনুক বের করেন| সন্তুষ্ট না হওয়া পর্য়ন্ত আপনি আপনার তীর ব্যবহার করেন| নদী দ্বারা আপনি পৃথিবী বিভক্ত করেন| 10 পাহাড়গুলো আপনাকে দেখেছিল এবং কেঁপে উঠেছিল| জল জমির ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল| সমুদ্রের জল গর্জন করেছিল য়েন সে জমির ওপর তার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল| 11 সূর্য় এবং চন্দ্র তাদের উজ্জ্বলতা হারিয়েছিল| তারা যখন বিদ্য়ুতের উজ্জ্বল ঝলক দেখেছিল, তখন তারা তাদের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলেছিল| সেই বিদ্য়ুতের ছটা বাতাসের মধ্যে ছুঁড়ে দেওয়া বল্লম এবং তীরের মতো দেখাচ্ছিল| 12 ক্রুদ্ধ হয়ে আপনি পৃথিবীর ওপর দুর্বার ভাবে হেঁটেছিলেন এবং জাতিগণকে শাস্তি দিয়েছিলেন| 13 আপনি আপনার লোকদের রক্ষা করার জন্য এসেছেন| আপনি আপনার মনোনীত রাজাকে জয়ের জন্য নেতৃত্ব দিতে এসেছেন| আপনি দেশের নগণ্যতম ব্যক্তি থেকে সব চেয়ে গন্যমান্য ব্যক্তি পর্য়ন্ত প্রত্যেক দুষ্ট পরিবারের নেতাকে হত্যা করেছেন| 14 আপনি সৈন্যদের মস্তক তাদের নিজেদের তীর দ্বারা বিদ্ধ করেছিলেন, যারা ঘূর্ণিঝড়ের মত উড়ে এসেছিল আমাদের ছিন্নভিন্ন করার জন্য| কেউ য়েমন একটি দরিদ্র ব্যক্তিকে গোপনে খেয়ে ফেলে, ঠিক য়েমন একটি বন্য জন্তু তার গুহায় করে, আপনি সেই ভাবে উত্সব উদযাপন করলেন| 15 কিন্তু আপনার ঘোড়াগুলো গভীর জলের মধ্যে আলোড়িত করে ছুটে গিয়েছিল| 16 আমি এই গল্প শুনে খুব উত্তেজিত হয়েছিলাম| আমি জোরে শিস্ দিয়েছিলাম! আমি আমার হাড়ের মধ্যে দুর্বলতা অনুভব করেছিলাম| আমি সেখানে কাঁপতে কাঁপতে দাঁড়িয়েছিলাম| তাই ধ্বংসের দিনের জন্য আমি ধৈর্য়্য় ধরে অপেক্ষা করব, যখন তারা লোকদের আক্রমণ করবে| 17 হয়তো ডুমুর গাছে ডুমুর বৃদ্ধি পাবে না| দ্রাক্ষাগাচে দ্রাক্ষা হবে না| জলপাইগাছে জলপাই জন্মাবে না| মাঠে শস্য হবে না| খোঁযাড়গুলোতে হয়তো কোন মেষ থাকবে না| কোন গবাদি পশু হয়তো গোলাবাড়ীগুলোতে থাকবে না| 18 কিন্তু আমি তবু প্রভুতে আনন্দ করব| য়ে ঈশ্বর আমার পরিত্রাতা, আমি তাতে আনন্দ করবো| 19 প্রভু, আমার সদাপ্রভু, আমাকে শক্তি দেন| হরিণের মতো দ্রুত দৌড়বার জন্য তিনি আমাকে সাহায্য করেন| তিনি আমাকে পাহাড়ের ওপরে নিরাপদে চালনা করেন|সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি, আমার তারবাদ্যে|
1 প্রভু এই বার্তাটি সফনিয়কে দিয়েছিলেন| আমোনের পুত্র যোশিয় য়খন যিহূদার রাজা, সেই সমযে সফনিয় এই বার্তাটি পেয়েছিলেন| সফনিয় ছিলেন কূশির পুত্র| কূশি ছিলেন গদলিয়ের পুত্র| গদলিয় ছিলেন অমরিয়ের পুত্র| অমরিয় ছিলেন হিষ্কিয়ের পুত্র| 2 প্রভু বলেছেন, “আমি পৃথিবীর ওপর সব কিছু ধ্বংস করব! 3 আমি সব মানুষ এবং পশুদের ধ্বংস করব| আকাশের পাখী এবং সমুদ্রের মাছকেও আমি ধ্বংস করব| আমি দুষ্ট লোক এবং য়ে সমস্ত জিনিষ তাদের পাপকাজে প্ররোচিত করে তা ধ্বংস করব| আমি পৃথিবী থেকে সমস্ত মনুষ্য জাতিকে সরিয়ে দেব|” প্রভু এই কথাগুলো বলেন| 4 প্রভু বলেছেন, “যিহূদা এবং জেরুশালেমে য়েসব লোক বাস করছে তাদের আমি শাস্তি দেব| আমি ঐ জায়গা থেকে এইসব জিনিসগুলো দূর করব| আমি বাল পূজোর বাকী চিহ্নগুলি সরিয়ে দেব| আমি যাজকদের সরিয়ে দেব| 5 লোকেরা ঐ সব ভ্রান্ত যাজকদের সম্বন্ধে ভুলে যাবে এবং য়ারা তাদের ছাদে গিয়ে তারকাসমূহের পূজো করে তাদের সরিয়ে দেব| কিছু লোক বলে যে তারা আমাকে উপাসনা করে| ঐসব লোকেরা আমাকে উপাসনা করার জন্য প্রতিশ্রুতি করেছিল, কিন্তু এখন তারা মালকামের মূর্ত্তি পূজো করছে| সেজন্য আমি ঐসব লোকেদের এই জায়গা থেকে সরিয়ে দেবো| 6 কিছু লোক প্রভুর পথ থেকে সরে গিয়েছিল| তারা আমাকে অনুসরণ করা ছেড়েছে| ঐ লোকেরা প্রভুর কাছ থেকে আর সাহায্য চায় না| সেজন্য আমি ঐসব লোকেদের সেই জায়গা থেকে দূর করে দেব|” 7 আমার প্রভু, সদাপ্রভুর সামনে নীরব থাকো! কেন? কারণ শীঘ্রই জনসাধারণকে বিচার করার জন্য প্রভুর দিন আসছে! প্রভু তাঁর উত্সর্গের আয়োজন করেছেন এবং তিনি তাঁর নিমন্ত্রিত অতিথিদের প্রস্তুত হয়ে থাকতে বলেছেন| 8 প্রভু বলেছেন, “প্রভুর উত্সর্গের দিনে, আমি রাজপুত্রদের এবং অন্যান্য নেতাদের শাস্তি দেব| অন্য দেশসমূহ থেকে পাওয়া পোষাক যারা পরে আমি সেইসব লোকেদের শাস্তি দেব| 9 সেই সমযে চৌকাঠের ওপর য়ারা লাফায তাদের আমি শাস্তি দেব| য়ারা তাদের প্রভুর গৃহ প্রবঞ্চনা ও হিংস্রতা দিযে ভরিযে রাখে তাদের আমি শাস্তি দেব|” 10 প্রভু আরো বলেছেন, “সেই সমযে, জনসাধারণ সাহায্যের জন্য জেরুশালেমের মত্সদ্বারের সামনে এসে ডাকবে| শহরের অন্যান্য জায়গার লোকেরা কাঁদবে এবং পাহাড়ের চারিদিকে য়েসব জিনিস ধ্বংস করা হচ্ছে তাদের বিশাল আওয়াজ জনসাধারণ শুনতে পাবে| 11 জনসাধারণ, তোমরা য়ারা শহরের নিথঞ্চলে থাকো, তোমরা কাঁদবে| কেন? কারণ, সব ব্যবসায়ী এবং ধনী বণিকরা ধ্বংস হবে| 12 “সেই সমযে আমি একটা প্রদীপ নেব এবং জেরুশালেমের ভেতর খুঁজব| য়ারা নীচভাবে জীবনাপন করছে আমি তাদের খুঁজে বের করব| সেইসব লোকেরা বলে, ‘প্রভু কিছুই করেন না| তিনি আমাদের সাহায্যও করেন না এবং ক্ষতিও করেন না!’ আমি সেইসব লোকদের খুঁজে বের করব এবং তাদের শাস্তি দেব! 13 তখন অন্যান্য লোকেরা তাদের সম্পত্তি নেবে এবং বাড়ীগুলি ধ্বংস করবে| সেই সমযে, লোকে য়ে সব গৃহ তৈরী করেছে তাতে তারা বাস করতে পারবে না এবং মাঠে য়ে দ্রাক্ষাগাছ লাগিযেছিল সেই দ্রাক্ষা থেকে তারা দ্রাক্ষারস পান করতে পারবে না- অন্যান্য লোকেরা সেইসব ভোগ করবে|” 14 বিচার করার জন্য প্রভুর বিশেষ দিন শীঘ্রই আসছে! সেইদিনটি কাছে এসে পড়েছে এবং তাড়াতাড়িই আসছে| প্রভুর বিচার করার বিশেষ দিনে লোকে খুবই বিষাদময় শব্দ শুনতে পাবে| এমনকি শক্তিশালী সৈন্যরাও বিলাপ করবে| 15 সেই মূহুর্তে ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন| সমযটা হবে ভযঙ্কর সঙ্কটের এবং ধ্বংসের| সমযটা হবে অন্ধকারের সময- কালো, মেঘাচ্ছন্ন এবং ঝড়ের দিন| 16 সেটা য়ুদ্ধের সমযের মতো, য়খন লোকেরা প্রতিরক্ষার দুর্গে এবং সুরক্ষিত শহরগুলোতে শিঙা এবং ভেরীর আওয়াজ শুনতে পাবে| 17 প্রভু বলেছিলেন, “আমি লোকের জীবনকে খুবই কঠিন করে তুলব| অন্ধ লোকেরা যেমন জানে না তারা কোথায় ঘুরছে, সেইভাবেই লোকে চারিদিকে হাতড়ে বেড়াবে| কেন? কারণ ঐ লোকেরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছে| বহুলোক হত হবে| তাদের রক্ত মাটিতে চল্কে পড়বে| মাটিতে তাদের মৃতদেহগুলো গোবরের মত স্তুপাকার করা হবে| 18 সোনা এবং রূপো তাদের সাহায্যে আসবে না! সেই সমযে প্রভু তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন এবং পুরো পৃথিবী ধ্বংস করে দেবেন| পৃথিবীর সবাইকে সম্পূর্ণরূপে প্রভু ধ্বংস করবেন!”
1 ওহে নির্লজ্জ লোকেরা, খড় য়েমন একদিনের মধ্যে অদৃশ্য হযে য়ায তোমরা সেরকম হওযার আগে, প্রভুর ক্রোধাগ্নি তোমাদের ওপর পড়ার আগে, 2 প্রভুর এোধর দিন তোমাদের ওপর এসে পড়ার আগে, তোমাদের জীবন যাত্রার পরিবর্ত্তন কর! 3 সমস্ত লোকেরা, তোমরা য়ারা বিনয়ী, তারা প্রভুর কাছে এসো| তোমরা সকলে তাঁর আদেশ পালন করো| 4 কেউ গাজাতে পড়ে থাকবে না| অস্কিলোন ধ্বংস হবে| দুপুরের মধ্যে জনসাধারণকে অস্দোদ ছাড়ার জন্য বল প্রয়োগ করা হবে| ইক্রোণ খালি হয়ে য়াবে! 5 সমুদ্রের নিকট বসবাসকারী পলেষ্টীয়দের জন্য প্রভুর এই বার্তা| কনান, পলেষ্টীয়দের দেশ, ধ্বংস করা হবে| কোন লোক সেখানে বাস করবে না! 6 মেষপালক ও তাদের মেষের জন্য সমুদ্রের ধারে তোমাদের দেশ শূন্য মাঠ হযে য়াবে| 7 তখন সেই জায়গাটি য়িহূদা থেকে জীবিত অবস্থায় পালিয়ে আসা লোকেদের অধিকারে আসবে| য়িহূদা থেকে আসা ঐ লোকদের প্রভু স্মরণ করবেন| তারা একটি বিদেশে কযেদী হযে রয়েছে| কিন্তু প্রভু তাদের ফিরিয়ে আনবেন| তখন ঐসব মাঠে য়িহূদাবাসীরা তাদের মেষদের ঘাস খাওয়াবে| সন্ধ্যেবেলায়, তারা অস্কিলোনের খালি বাড়ীগুলোয় শুয়ে পড়বে| 8 প্রভু বলেছেন, “মোয়াব এবং অম্মোনবাসীরা কি করেছে তা আমি জানি| ঐ লোকেরা আমার লোকজনদের অস্বস্তিতে ফেলেছে| ঐ লোকেরা তাদের নিজের দেশকে বাড়াবার জন্য তাদের জমি নিযেছে| 9 অতএব, আমি আমার নামে শপথ করে বলছি য়ে, সদোম এবং ঘমোরার মতো মোয়াব এবং অম্মোনবাসীরা ধ্বংস হবে| আমিই প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এবং আমি প্রতিশ্রুতি করেছি য়ে চিরকালের জন্য ঐ দেশগুলিকে ধ্বংস করব| ঐ দেশগুলি কাঁটায ভরে যাবে| তাদের দেশ একটি লবণের গহবরে পরিনত হবে| জীবিত অবস্থায় পালিয়ে আসা আমার লোকেরা সেই দেশটাকে এবং য়েসব সম্পদ তার মধ্যে রযে গেছে তাও নিযে নেবে|” 10 মোয়াব এবং অম্মোনে এগুলি ঘটবে কারণ তারা ছিল গর্বিত এবং সর্বশক্তিমান প্রভুর লোকেদের প্রতি নিষ্ঠুর এবং তাদের অপমান করেছিল| 11 ঐসব লোকেরা প্রভুর ভযে ভীত হবে| কেন? কারণ প্রভু তাদের মূর্ত্তিগুলিকে ধ্বংস করবেন| তখন দূর দেশের লোকেরাও প্রভুর উপাসনা করবে| 12 ওহে কূশীয়রা, এই হবে তোমাদের পরিনতি| প্রভুর তরবারি তোমার লোকেদের জীবন নাশ করবে| 13 প্রভু উত্তরে ঘুরে য়াবেন এবং অশূরকে শাস্তি দেবেন| তিনি নীনবীকে ধ্বংস করবেন- সেই শহরটি শূন্য এবং শুকনো মরুভূমির মতো হযে যাবে| 14 তখন কেবল মেষ এবং বন্য প্রাণীরা ঐ বিধ্বস্ত শহরে বাস করবে| য়ে স্তম্ভগুলি দাঁড়িয়ে আছে সেগুলির উপর পেঁচা ও কাকেরা বসবে| কালো পাখীরা ঐ খালি বাড়িগুলিতে বসবে| 15 নীনবী এখন খুব গর্বিত| এটি একটি সুখী নগর| নগরের জনসাধারণ ভাবছে তারা নিরাপদে আছে| তারা ভাবছে, পৃথিবীর মধ্যে নীনবীই হচ্ছে সেই মহান জায়গা| কিন্তু এই দেশটি ধ্বংস হবে| নগরটি এমন একটি খালি জায়গা হযে য়াবে য়েখানে বন্য প্রাণীরাই বিশ্রাম নিতে য়ায| লোকেরা য়ারা ঐ জায়গা দিযে যাবে তারা যখন দেখতে পাবে কি বিশ্রীভাবে ঐ শহরটি ধ্বংস হয়েছিল তখন তারা শিষ দেবে আর অবাক হয়ে মাথা নাড়াবে|
1 জেরুশালেম, তোমার লোকেরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল! তারা অন্য়দের আঘাত করেছিল এবং তোমাকে পাপে কলঙ্কিত করা হযেছে| 2 তোমার লোকেরা আমার কথা শোনেনি! তারা আমার শিক্ষা গ্রহণ করেনি| জেরুশালেম প্রভুতে বিশ্বাস করেনি| জেরুশালেম তার ঈশ্বরের কাছে য়ায নি| 3 জেরুশালেমের নেতারা গর্জনকারী সিংহের মতো| তারা বিচারকেরা ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো য়ে নেকড়ে সন্ধ্যেবেলায় মেষদের আক্রমণ করতে আসে আর দেখে সকালবেলায় কিছুই পড়ে নেই| 4 তার ভাব্বাদীরা আরও অধিকতর জিনিষে অধিকার পাওয়ার জন্য সবসময গোপন পরিকল্পনা করছে| তার য়াজকরা পবিত্র বস্তু এমনভাবে ব্যবহার করেছিল য়েন তারা পবিত্র নয| তারা ঈশ্বরের বিধির বিরুদ্ধে উগ্র আচরণ করেছিল| 5 ঈশ্বর এখনও পর্য়ন্ত সেই শহরে আছেন এবং তিনি এখনও তাদের প্রতি অনুগত| ঈশ্বর কোন ভুল কাজ করেন না| তিনি তাঁর প্রজাদের সাহায্য করে যান| প্রতিদিন সকালে ভালো সিদ্ধান্ত নেবার জন্য তিনি লোকেদের সাহায্য করেন| কিন্তু ঐ খারাপ লোকেরা তাদের খারাপ কাজের জন্য মোটেই লজ্জিত নয| 6 ঈশ্বর বলেছিলেন, “আমি পুরো জাতিদের ধ্বংস করেছি| আমি আত্মরক্ষার অট্টালিকাগুলি ধ্বংস করেছি| আমি রাস্তাগুলি ধ্বংস করেছি এবং এখন আর কেউই সেখানে য়েতে পারে না| তাদের শহরগুলি শূন্য এবং সেখানে আর কেউ কখনও বাস করে না| 7 আমি তোমাদের এই কথাগুলি বলছি য়েন তোমরা এর থেকে শিক্ষা পাও| আমি চাই তোমরা আমাকে ভয় পাও এবং আমাকে সম্মান কর| য়দি তোমরা তা করো, তাহলে তোমাদের বাড়ী কখনই ধ্বংস হবে না| য়দি তোমরা এই কাজ কর, তাহলে আমি তোমাদের কখনোই আমার পরিকল্পনা অনুযায়ীধ্বংস করব না|” কিন্তু ঐ খারাপ লোকেরা একই ধরণের খারাপ কাজ আরও বেশী করে করতে চাইছে, য়া তারা ইতিমধ্যেই করেছে! 8 প্রভু বলেছেন, “সেজন্যে একটু অপেক্ষা করো, য়াতে আমি দাঁড়িয়ে তোমাদের বিচার করতে পারি| অন্য বহুজাতির থেকে লোক আনা এবং তোমাদের শাস্তি দেবার জন্য তাদের ব্যবহার করা অবশ্যই কর্তব্য আমার| আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার ক্রোধ দেখানোর জন্য ঐ লোকেদের ব্যবহার করবো| আমি তাদের দ্বারা দেখাব য়ে আমি কতখানি মানসিকভাবে বিপর্য়স্ত এবং পুরো দেশটি ধ্বংস হযে য়াবে! 9 তখন আমি অন্যান্য জাতির লোকেদের পরিবর্তন করব যাতে তারা শুদ্ধ মুখে, শুদ্ধ ভাষায় প্রভুকে ডাকে| তারা কাঁধে কাঁধ দিযে ‘একজন লোকের মত মিলিত হবে এবং আমাকে উপাসনা করবে| 10 কূশ দেশের নদীর ওপার থেকে লোকজন সরাসরি চলে আসবে| চারিদিকে ছড়িয়ে পড়া আমার লোকেরা আমার কাছে আসবে| আমার উপাসনাকারীরা আমার কাছে তাদের উপহার নিয়ে আসবে| 11 “তখন জেরুশালেম, য়েসব খারাপ কাজগুলো তোমার লোকেরা আমার বিরুদ্ধে করেছে তার জন্য আর তোমাকে লজ্জিত হতে হবে না| কেন? কারণ আমি জেরুশালেম থেকে সেইসব খারাপ লোকদের দূর করে দেব| আমি সেইসব অহঙ্কারী লোকদের সরিয়ে নিযে যাবো| আমার এই পবিত্র পর্বতে ঐসব অহঙ্কারী লোকেদের কেউই থাকবে না| 12 য়ারা নম্র ও বিনীত শুধুমাত্র সেইসব লোকেদেরই আমি আমার শহরে বাস করতে দেব এবং তারা প্রভুর নামে আস্থা রাখবে| 13 ইস্রায়েলীয়রা য়ারা বেঁচে আছে, তারা মন্দ কাজ করবে না| তারা কখনই প্রবঞ্চিত করার চেষ্টা করবে না| তারা মেষের মত হবে যারা খায় আর শান্তিতে শুয়ে থাকে- এবং কেউই তাদের বিরক্ত করে না|” 14 জেরুশালেম, খুশী হও এবং উপভোগ কর| ইস্রাযেল আনন্দে চিত্কার করো| জেরুশালেম সুখে থাকো এবং মজা করো| 15 কেন? কারণ প্রভু তোমাদের শাস্তি দেওয়া বন্ধ করেছেন! তিনি তোমাদের শত্রুদের শক্তিশালী উচ্চ অট্টালিকাগুলি ধ্বংস করেছিলেন! ইস্রায়েলের রাজা! প্রভু তোমার সঙ্গে আছেন| কোন অঘটনের বিষয়ে তোমার দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই| 16 সেই সমযে, জেরুশালেমকে বলা হবে, “শক্ত হও, ভয় পেও না! 17 তোমার প্রভু ঈশ্বর তোমার সঙ্গে আছেন| তিনি শক্তিশালী সৈন্যের মতো| তিনি তোমাকে রক্ষা করবেন| তিনি দেখাবেন তিনি তোমাকে কতটা ভালোবাসেন| তিনি তোমার সঙ্গে কতটা সুখী তা দেখাবেন| তিনি তোমার ওপর এত খুশী হবেন য়ে, তিনি গান গাইবেন ও নাচবেন|” 18 প্রভু বলেছিলেন, “আমি তোমার লজ্জাকে দূর করে দেবো| আমি ঐসব লোকদের তোমাকে আঘাত করা থেকে থামাবো| 19 সেই সময়ে, য়েসব লোক তোমাকে আঘাত করে তাদের আমি শাস্তি দেব| আমি আমার আঘাত পাওয়া লোকদের রক্ষা করব| য়েসব লোকেরা ছুটে পালাতে বাধ্য় হযেছিল তাদের আমি ফিরিয়ে আনবো| এবং আমি তাদের বিখ্যাত করে তুলবো| সব জায়গার লোক তাদের প্রশংসা করবে| 20 সেই সময়ে, আমি তোমাদের ফিরিয়ে আনবো| আমি তোমাদের সবাইকে একসঙ্গে ফিরিয়ে আনবো| আমি তোমাদের বিখ্যাত করে তুলব| সব জায়গার লোক তোমাদের প্রশংসা করবে| আর সেটা তখনই ঘটবে য়খন আমি কয়েদীদের তোমার নিজের চোখের সামনে দিয়ে ফিরিয়ে আনবো|” প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন|
1 দারিয়াবস রাজার রাজত্বকালের দ্বিতীয় বছরের ষষ্ঠ মাসের প্রথম দিনে প্রভু হগয ভাব্বাদীর মধ্য দিয়ে সরুব্বাবিলের ও যিহোশূযের কাছে কথা বললেন| সরুব্বাবিল ছিলেন শলটীযেলের পুত্র এবং যিহূদার রাজ্যপাল এবং যিহোশূয় ছিলেন মহাযাজক| এই হল সেই বার্তা| 2 সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন, “যিহূদার লোকে বলে য়ে প্রভুর মন্দির পুনঃনির্মাণ করার সময় এখনও আসেনি|” 3 হগয় আবার প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলেন| 4 “তোমরা কি মনে কর তোমাদের সুন্দর বাড়িতে বাস করার এইটাই সময়, যখন কিনা প্রভুর এই মন্দির ধ্বংসস্থান হয়ে রয়েছে?” 5 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, ‘নিজের পথ সম্পর্কে সতর্কভাবে চিন্তা কর!’ 6 তোমরা অনেক বীজ বপন করেছ বটে কিন্তু অল্পই ফসল তুলেছ| তোমরা খাও-দাও কিন্তু তৃপ্ত হও না| তোমরা পান করছ বটে কিন্তু মত্ত হচ্ছ না| তোমরা কাপড় পরছ বটে কিন্তু উষ্ণ হচ্ছ না| য়ে টাকা উপায় করে সে ছেঁড়া থলিতে টাকা রাখছে|”‘ 7 সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন, “তোমাদের ব্যবহার ও অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে চিন্তা করো! 8 ওঠ, পাহাড়ে গিয়ে কিছু কাঠ নিয়ে এসে আমার মন্দির তৈরী করো| প্রভু বলেছিলেন, ‘তাহলে আমি মন্দির নিয়ে খুশী হব এবং তাতে সম্মানিত হব|” 9 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “তোমরা প্রভুর ফসলের আশা করেছিলে কিন্তু অল্পই সংগ্রহ করলে| আর সেই অল্প ফসল তোমরা তোমাদের ঘরে আনবার পর আমি তা ফুঁ দিয়ে উড়িযে দিলাম| এর কারণ কি? সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, এর কারণ আমার গৃহ ধ্বংসের মধ্যে পড়ে আছে যখন কি না তোমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের বাড়ী নিয়ে ব্যস্ত| 10 এই জন্য তোমাদেরই কারণে আকাশ বৃষ্টি দেবে না এবং ভূমি ফসল উত্পন্ন করবে না|” 11 প্রভু বলেন, “আমি ভূমি ও পাহাড়কে আজ্ঞা দিছি য়েন তা শুকিয়ে যায়| শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস, অলিভ তেল এবং পৃথিবীতে যা কিছু উত্পন্ন হয় সে সব ধ্বংস হয়ে যাবে| লোকজন ও পশুরা দুর্বল হয়ে পড়বে| লোকদের সমস্ত কঠোর পরিশ্রম ব্যর্থ হবে|” 12 প্রভু শলটীযেলের পুত্র সরুব্বাবিলের সঙ্গে এবং যিহোষাদকের পুত্র, মহাযাজক যিহোশূয়র সঙ্গে কথা বলার জন্য হগযকে পাঠিয়েছিলেন| এই লোকরা এবং সমস্ত জনগণ তাদের ঈশ্বর প্রভুর কণ্ঠ এবং ভাব্বাদী হগযের কথা শুনেছিল| লোকরা তাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রতি ভয় ও সম্মান দেখালো| 13 হগয ছিলেন একজন দূত য়াঁকে প্রভু ঈশ্বর জনগণের কাছে তাঁর বার্তা পৌঁছে দেবার জন্য বার্তাবাহক হিসেবে পাঠিয়েছিলেন| প্রভু বলেন, “আমি তোমাদের সঙ্গে আছি!” 14 পরে প্রভু ঈশ্বর শলটীয়েলের পুত্র সরুব্বাবিল যিনি যিহূদার অধ্যক্ষ ছিলেন তাকে, যিহোষাদকের পুত্র যিহোশূয় মহাযাজককে ও লোকদের আত্মাকে উত্তেজিত করলেন| তাই তারা এলো এবং তাদের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমানের মন্দির গঠনের কাজ শুরু করল| 15 দারিয়াবস রাজার রাজত্ব কালের দ্বিতীয় বছরের ষষ্ঠ মাসের 24তম দিনে তারা এই কাজ করতে আরম্ভ করেছিল|
1 প্রভু তাঁর ভাব্বাদী হগযকে সপ্তম মাসের 21তম দিনে এই বার্তা দিয়েছিলেন| 2 “যিহূদার অধ্যক্ষ শলটীযেলের পুত্র সরুব্বাবিলের সঙ্গে যিহোষাদকের পুত্র মহাযাজক যিহোশূয়র সঙ্গে এবং সমস্ত লোকের সঙ্গে কথা বল| তাদের বল: 3 “তোমাদের মধ্যে এমন কে রয়েছে য়ে এই মন্দিরকে তার পূর্বের গৌরব মণ্ডিত অবস্থায় দেখেছিলে? তোমাদের কি মনে হয়? প্রথম মন্দিরটির তুলনায় এই মন্দিরটি কি দেখতে কিছুই নয়? 4 কিন্তু এখন, সরুব্বাবিল, প্রভু বলেন, ‘সাহস হারিযো না, শক্ত হও|’ যিহোষাদকের পুত্র মহাযাজক যিহোশূয়, ‘সাহস হারিযো না, শক্ত হও|’ এই দেশের সমস্ত লোককে প্রভু এই কথা বলেন, ‘সাহস হারিযো না, শক্ত হও|’ এই কাজ করে যাও কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে আছি!’ প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথা বলেন!” 5 প্রভু বলেন, “তোমরা যখন মিশর দেশ ত্যাগ করেছিলে সেই সময় আমি তোমাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম| আর আমি আমার সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছি| আমার আত্মা তোমাদের সঙ্গে রয়েছে| সুতরাং ভয় পেও না| 6 কারণ প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলো বলছেন! কিছু ক্ষণের মধ্যেই আমি আকাশ ও পৃথিবীকে নাড়া দেব| আমি সমুদ্র ও শুকনো জমিকেও কাঁপিয়ে তুলব| 7 আমি প্রত্যেকটি জাতিকে নাড়া দেব এবং তারা সমস্ত জাতিদের সমস্ত সম্পদ নিয়ে তোমার কাছে আসবে| তখন আমি এই মন্দির মহিমায পূর্ণ করব| প্রভু সর্বশক্তিমান এই সব কথা বলছেন| 8 রূপো আমারই, সোনাও আমার, সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| 9 এই মন্দিরটির গৌরব প্রথম মন্দিরের গৌরবের চেয়ে অনেক বেশী হবে| সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেছেন| এই স্থানে আমি শান্তি প্রদান করব, সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেছেন|” 10 রাজা দারিয়াবসের রাজত্বকালের দ্বিতীয় বছরের নবম মাসের 24তম দিনে প্রভু ভাব্বাদী হগয়কে এই বার্তা দিয়েছিলেন| 11 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, এইগুলির সম্বন্ধে আইন কি বলে সেটা যাজকদের জিজ্ঞাসা কর| 12 “যদি কোন লোক তার কাপড়ের ভাঁজে মাংস বহন করে এবং তার পোষাক কিছু পাঁউরুটি, রান্না করা খাবার, দ্রাক্ষারস, তেল অথবা অন্য কোন খাদ্য স্পর্শ করে তাহলে কি এই জিনিষগুলি পবিত্র হয়ে যাবে?”যাজকরা উত্তরে বললেন, “না|” 13 তখন হগয় বললেন, “যদি কোন অশুচি ব্যক্তি এইসব জিনিস স্পর্শ করে তবে তা কি অশুচি হয়?”আর যাজকরা উত্তরে বললেন, “তা অশুচি হয়|” 14 তখন হগয বললেন, “প্রভু বলেন, ‘এই লোকরা এবং এই জাতি আমার সামনে পবিত্র নয়| তারা যা কিছু কাজ করে এবং যা কিছু মন্দিরে আনে সেগুলোও অশুদ্ধ| 15 এখন, আগে যা ঘটেছিল সেগুলোর সম্বন্ধে ভাবো| প্রভুর মন্দিরে একটি পাথরের ওপর আর একটি স্থাপন করবার আগের সময়ের কথা ভাবো| 16 তখন তোমাদের কেমন অবস্থা ছিল? যখন একজন লোক 20কাঠা পরিমাণের জন্য শস্য়ের স্ু3পের কাছে এসেছিল তখন সে শুধু 10কাঠা পেতে সমর্থ হয়েছিল| যখন একটি লোক 50 বোযেম দ্রাক্ষারসের জন্য দ্রাক্ষারসের জালারক্টকাছে এসেছিল, সেখানে ছিল শুধু 20 বোযেম| 17 কেন? কারণ আমি তোমাদের শাস্তি দিয়েছিলাম| তোমরা তোমাদের হাত দিয়ে য়ে সব জিনিষ তৈরী করেছিলে সেগুলো ধ্বংস করবার জন্য আমি রোগসমূহ ও শিলাবৃষ্টি পাঠিয়েছিলাম কিন্তু তবু তোমরা আমার কাছে ফিরে আসোনি|’ প্রভু এগুলি বলেছিলেন|” 18 প্রভু বলেন, “আজ নবম মাসের 24তম দিন| তোমরা প্রভুর মন্দিরের ভিত স্থাপনের কাজ শেষ করেছ| এবার লক্ষ্য কর আজকের দিনের পর থেকে কি ঘটে| 19 তোমাদের গোলায কি কিছু শস্য অবশিষ্ট আছে? না| দ্রাক্ষালতা, ডুমুরগাছ, বেদানা ও অলিভ গাছের দিকে দেখ, তারা কি ফল দিচ্ছে? না| কিন্তু আজকের দিন থেকে আমি তোমাদের আশীর্বাদ করব!”20মাসের 24তম দিনে প্রভুর কাছ থেকে হগযের কাছে আর একটি বার্তা এল| এই সেই বার্তা: 21”যিহূদার অধ্যক্ষ সরুব্বাবিলের কাছে গিয়ে বল য়ে আমি আকাশ ও পৃথিবীকে কাঁপিয়ে তুলব| 22আমি অনেক রাজা ও তাদের রাজ্যকে উলেট ফেলব| আমি ঐসব রাজ্যের লোকদের শক্তিকেও খর্ব করব| আমি তাদের রথ ও রথের আরোহীদের ধ্বংস করব| তাদের যুদ্ধের ঘোড়া ও ঘোড়সওযারীকেও আমি ধ্বংস করব| সেই সমস্ত সৈন্যরা এখন পরস্পরের মিত্র কিন্তু তারাই একে অপরের বিরুদ্ধে উঠে তরবারি দিয়ে একে অপরকে হত্যা করবে| 23প্রভু সর্বশক্তিমান এই সব কথা বলেন| শলটীযেলের পুত্র সরুব্বাবিল, তুমি আমার দাস| আমি তোমায় মনোনীত করেছি| সেই সময়ে আমি তোমাকে “মোহরাঙ্কিত আংটির”6 মত করে দেব| আমি য়ে এসব করেছি তার প্রমাণ তুমিই হবে|”সর্বশক্তিমান প্রভু এই সব কথা বলেন| 20 21 22 23
1 বেরিখিযের পুত্র সখরিয় প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেয়েছিলেন| এটা ঘটেছিল পারস্য়ের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরের অষ্টম মাসে (সখরিয় ছিলেন বেরিখিযের পুত্র, যিনি ছিলেন ভাব্বাদী ইদ্দোর পুত্র) বার্তাটি ছিল: 2 প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষের উপর খুব রোধন্বত হয়েছিলেন| 3 সুতরাং তোমরা অবশ্যই লোকেদের এই কথাগুলি বলবে| প্রভু বলেন, “তোমরা আমার কাছে ফিরে এস, তাহলে আমিও তোমাদের কাছে ফিরব|” সর্বশক্তিমান প্রভুই এই কথা বলেছেন| 4 প্রভু বলেছেন, “তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মতো হযো না| অতীতে, ভাব্বাদীরা তাদের কাছে বলতেন, ‘সর্বশক্তিমান প্রভু চান তোমরা তোমাদের অসত্ জীবনযাপনের ধারা বদলে দাও আর কোন মন্দ কাজ করো না!’ কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষেরা আমার কথা শোনেনি|” প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 5 ঈশ্বর বলেছেন, “তোমাদের পূর্বপুরুষেরা আজ আর নেই| সেই ভাব্বাদীরা চিরকালের জন্য বেঁচে থাকেনি| 6 ঐ ভাব্বাদীরা আমার দাস ছিল| আমার বিধি ও শিক্ষামালা সম্বন্ধে তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে জানাবার জন্য আমি তাদের ব্যবহার করতাম| অবশেষে, তোমাদের পূর্বপুরুষেরা শিক্ষা গ্রহণ করে বলেছিল, ‘প্রভু হলেন সর্বশক্তিমান, তিনি যা বলেছিলেন তাই-ই করেছেন| আমাদের মন্দ কাজের জন্য ও অসত্ভাবে জীবনযাপনের জন্য তিনি আমাদের শাস্তি দিয়েছেন|’ এইভাবে তারা ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছিল|” 7 রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরের একাদশতম মাসের 24তম দিনে সখরিয় প্রভুর কাছ থেকে আরেকটি বার্তা পেলেন| বার্তাটি এইরকম ছিল: 8 রাত্রে আমি একটি দর্শন পেলাম| সেই দর্শনে আমি একটি লোককে একটা লাল রঙের ঘোড়ার ওপর দেখলাম| সে উপত্যকায কিছু সুগন্ধ পত্রবিশিষ্ট গুল্মের ঝোপের মধ্যে দাঁড়িয়েছিল| তার পেছনে ছিল লাল, খযেরী এবং সাদা রং এর ঘোড়া| 9 আমি জিজ্ঞেস করলাম, “মহাশয়, এই ঘোড়াগুলি কিসের জন্য?”তখন য়ে দেবদূত আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তিনি বললেন, “আমি তোমায় দেখাছি এই ঘোড়াগুলো কিসের জন্য|” 10 তখন লোকটি সুগন্ধী ঝোপগুলোর মধ্যে দাঁড়িয়ে উত্তর দিল, “পৃথিবীর চারিদিকে এদিক ওদিক যাবার জন্য প্রভু এই ঘোড়াগুলোকে পাঠিয়েছেন|” 11 তখন সুগন্ধী ঝোপঝাড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা প্রভুর দূতকে তারা বলল, “আমরা পৃথিবীর এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়িযেছি এবং লক্ষ্য করেছি য়ে সমগ্র পৃথিবী শান্ত ও স্থির|” 12 তখন প্রভুর দূত বললেন, “প্রভু, জেরুশালেম ও যিহূদার শহরগুলোকে স্বস্তি দিতে আপনি আর কত দেরী করবেন? আপনি 70 বছর ধরে এই শহরগুলোর প্রতি আপনার রোধ দেখিয়েছেন|” 13 তখন প্রভু আমার সঙ্গে কথোপকথনরত দেবদূতটিকে অনেক সদয ও স্বস্তিপূর্ণ কথা বললেন| 14 তখন প্রভুর দূত আমাকে লোকেদের এই কথা বলতে বললেন: প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন:“জেরুশালেম ও সিয়োনের জন্য আমার একটি গভীর অনুভূতি আছে| 15 এবং য়ে জাতিরা নিজেদের নিরাপদ বলে মনে করে, তাদের প্রতি আমি অতিশয রোধান্বত| আমি যখন তেমন রেগে ছিলাম না, তখন আমি ঐ জাতিদের ব্যবহার করেছিলাম আমার লোকেদের শাস্তি দিতে| কিন্তু ঐ জাতিগুলো ক্ষতি সাধন করেছে|” 16 তাই প্রভু বলেন, “আমি জেরুশালেমে ফিরে আসব এবং তাকে স্বস্তি দেব|” প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “জেরুশালেমকে আবার গড়া হবে আর সেখানে আমার গৃহও নির্মাণ করা হবে|” 17 দেবদূতেরা বলল লোকেদের বল: “প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, ‘আমার শহর আবার ধনী হয়ে উঠবে| আমি সিয়োনকে স্বস্তি দেব| আমি জেরুশালেমকে আবার আমার বিশেষ শহর হিসাবে মনোনীত করব|”‘ 18 তখন আমি উপরের দিকে তাকিযে চারটে শিং দেখতে পেলাম| 19 তারপর আমি আমার সঙ্গে আলাপচারী সেই দূতকে জিজ্ঞেস করলাম, “এই শিংগুলির অর্থ কি?”তিনি আমাকে বললেন, “এই শিংগুলি হল সেই শিং যারা ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকেদের বিদেশে ছড়িয়ে দিয়েছিল|” 20 প্রভু আমায় চারজন কারীগর দেখালেন| 21 আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, “ঐ চারজন কারীগর কি করতে আসছে?”তিনি বললেন, “এই শিংগুলি সেই জাতিগুলির প্রতিনিধিত্ব করছে, যারা যিহূদার লোকেদের আক্রমণ করেছিল এবং জোর করে তুলে তাদের নির্বাসনে পাঠিয়েছিল| তারা তাদের বিদেশে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল| কিন্তু এই চারজন কারীগর ঐ চারটি শিংকে ভয় দেখাতে এবং তাদের ছুঁড়ে ফেলে দিতে এসেছে!”
1 তারপর আমি চোখ তুলে চেয়ে দেখলাম মাপার ফিতে হাতে একজন মানুষ| 2 আমি জিজ্ঞেস করলাম, “আপনি কোথায যাচ্ছেন?”তিনি আমায় বললেন, “আমি জেরুশালেম মেপে দেখতে চাই তা দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে কতখানি|” 3 তখন য়ে দেবদূতটি আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি চলে গেলেন এবং আরেকটি দেবদূত তাঁর সঙ্গে কথা বলবার জন্য এগিয়ে এলেন| 4 তিনি তাকে বললেন, “দৌড়ে গিয়ে সেই যুবকদের বল য়ে জেরুশালেম মাপার পক্ষে অতিশয বড়| তার কাছে গিয়ে এই কথাগুলো বল:‘জেরুশালেম হবে প্রাচীরবিহীন একটি শহর কারণ জেরুশালেমে বসবাসকারী মানুষ ও পশুর সংখ্যা হবে অনেক|’ 5 প্রভু বলেছেন, ‘আমি শহরের চারধারে একটি আগুনের প্রাচীর তৈরী করে তাকে রক্ষা করব| এবং সেই শহরের মহিমা আনয়ণ করবার জন্য আমি সেখানে বাস করব|”‘ 6 প্রভু বলেছেন, “তাড়াতাড়ি কর, উত্তরে অবস্থিত দেশটি ত্যাগ কর! হ্যাঁ, এটা সত্যি য়ে আমি তোমার লোকেদের চতুর্দ্দিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম|” 7 ওহে সিয়োনের লোকেরা, যারা বাবিলে বাস করছ, তোমাদের প্রাণ বাঁচাতে এ জায়গা ছেড়ে যাও| ঐ শহর ছেড়ে পালাও! সর্বশক্তিমান প্রভুই এই কথা বলেছেন| তিনি আমাকে সেই জাতিগুলির মধ্যে পাঠিয়েছেন যারা তোমাদের লুঠ করেছিল| তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তোমাদের কাছে সম্মান আনতে| 8 কারণ তোমাদের আঘাত করা, ঈশ্বরের চোখের মণিকে আঘাত করবার তুল্য| 9 বাবিলের লোকেরা আমার লোকেদের কারারুদ্ধ করেছিল এবং তাদের এীতদাস বানিয়েছিল| কিন্তু আমি তাদের আঘাত করলে তারা আমার লোকেদের দাস হয়ে যাবে| তখন তোমরা জানবে য়ে সর্বশক্তিমান প্রভুই আমায় পাঠিয়েছেন|” 10 প্রভু বলেছেন, “সিয়োন, আনন্দ করো এবং সুখী হও! কারণ আমি আসছি এবং আমি তোমার শহরে বাস করব| 11 সেই সময়ে বহু জাতি আমার কাছে আসবে| তারা আমার লোক হবে এবং আমি তোমার শহরে বাস করব|” আর তুমি জানবে য়ে সর্বশক্তিমান প্রভু আমায় তোমার কাছে পাঠিয়েছেন|” 12 প্রভু জেরুশালেমকে তাঁর বিশেষ শহর হিসেবে আবার মনোনীত করবেন| যিহূদা হবে পবিত্র ভূমিতে তাঁর অংশ| 13 প্রত্যেকে নীরব হও! প্রভু তাঁর পবিত্র আবাস হতে আসছেন|
1 দেবদূতটি আমাকে মহাযাজক যিহোশূয়কে দেখালেন| যিহোশূয় প্রভুর দূতের সামনে দাঁড়ালেন আর শযতান তাঁর ডানদিকে দাঁড়াল| শযতান যিহোশূয়কে মন্দ কাজ করবার জন্য দোষারোপ করেছিল| 2 তখন প্রভুর দূত বললেন, “প্রভু তোমাকে ভর্ত্সনা করছেন এবং তিনি তোমাকে তিরস্কার করতে থাকবেন! প্রভু জেরুশালেমকে তাঁর বিশেষ শহর হিসেবে মনোনীত করেছেন| আগুন থেকে টেনে বের করা একটি জ্বলন্ত কাঠির মত তিনি ঐ শহর রক্ষা করেছেন|” 3 যিহোশূয় সেই দেবদূতটির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন| যিহোশূযের পরণে ছিল নোংরা কাপড়-চোপড়| 4 তখন দেবদূতটি তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে থাকা অপর দেবদূতদের বললেন, “যিহোশূয়র ঐ মলিন বস্ত্র খুলে নাও|” তখন সেই দেবদূত যিহোশূয়কে বললেন, “এখন আমি তোমার পাপ দূর করে দিয়েছি এবং আমি তোমাকে নতুন আধিকারিক বস্ত্রে সাজাব|” 5 তখন আমি বললাম, “ওর মাথায় একটা পরিষ্কার শিরস্ত্রাণ পরিযে দাও|” সুতরাং, যখন প্রভুর দূত কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন, তারা পরিষ্কার জামাকাপড় ও শিরস্ত্রাণ দিয়ে তাকে সজ্জিত করলেন| 6 তখন যিহোশূয়কে দূত বলল, 7 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “আমি যা বলি তা শোন এবং আমার উপদেশ মত জীবনযাপন কর| তাহলে তুমি আমার মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক হবে এবং মন্দির প্রাঙ্গণের যত্ন নেবে| এবং কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ঐ দেবদূতদের মত তুমিও মন্দিরের ভেতর তোমার ইচ্ছানুযায়ী য়েতে পারবে| 8 ওহে মহাযাজক যিহোশূয় এবং তোমার সামনে য়ে মহাযাজকেরা বসে আছে, সবাই দয়া করে শোন| অদূর ভবিষ্যতে আমার বিশেষ দাসকে যখন আমি আনব তখন কি ঘটবে তা দেখাবার জন্য এই লোকেরা তার উদাহরণস্বরূপ| তাকে ‘শাখা’ এই নামে ডাকা হয়| 9 দেখ, আমি যিহোশূয়র সামনে একটা বিশেষ ধরণের পাথর রাখছি| ঐ পাথরটার সাতটা দিক রয়েছে| আমি একটি বিশেষ বার্তা তাতে খোদাই করব| এটাই দেখাবে য়ে আমি একদিনে এই দেশের প্রতিটি পাপ দূর করব|” 10 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “সেই সময় লোকেরা তাদের বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে একত্রে বসবে| তারা একে অপরকে ডুমুর গাছ ও দ্রাক্ষালতার তলায় বসবার জন্য নিমন্ত্রণ জানাবে|”
1 য়ে দেবদূতটি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তিনি আমাকে জাগাবার জন্য আমার কাছে এলেন| সেই মুহূর্তে আমি ছিলাম ঘুম থেকে সদ্য জেগে ওঠা একজন মানুষের মত| 2 তখন দেবদূত আমায় জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি দেখতে পাচ্ছো?”আমি বললাম, “আমি একটি নিরেট সোনার বাতিদান দেখতে পাছি| সেই বাতিদানে সাতটি বাতি রয়েছে এবং বাতিদানের ওপরে রয়েছে একটি পাত্র| সেই পাত্র থেকে সাতটা ফাঁপা নল বেরিয়ে এসেছে এবং প্রত্যেকটি বাতিতে গিয়েছে| নলগুলি পাত্র থেকে বাতিতে তেল বহন করে| 3 পাত্রটির পাশে দুটি অলিভ গাছ, একটি ডান দিকে, অপরটি বাম দিকে| এই গাছেরা বাতির জন্য তেল উত্পন্ন করে|” 4 তখন আমি আমার সঙ্গে য়ে দেবদূতটি কথা বলছিলেন তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, “মহাশয়, এসবের অর্থ কি?” 5 দেবদূতটি বললেন, “এই জিনিসগুলো কি তা কি তুমি জানো না?”আমি বললাম, “জানি না মহাশয়|” 6 তিনি বললেন, “এ হল সরুব্বাবিলের কাছে প্রভুর বার্তা: সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, ‘তোমার শক্তি ও পরাএম তোমায় রক্ষা করবে না| তোমার সাহায্য আসবে আমার আত্মা থেকে|’ 7 ওহে উঁচু পর্বত, তুমি সরুব্বাবিলের কাছে কিছুই নও| তার সামনে তুমি একটি সমতলভূমির মত| সে মন্দিরটি গড়বে এবং যখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাথরটি সেখানে স্থাপন করা হবে, তখন লোকেরা চেঁচিয়ে উঠবে, ‘চমত্কার! অপূর্ব!”‘ 8 প্রভুর বার্তা আমাকে আরো বলল, 9 “সরুব্বাবিল আমার মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করবে| সে মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ করবে| তখন তুমি বুঝতে পারবে য়ে সর্বশক্তিমান প্রভু আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছেন| 10 শুরুতে কাজ অল্প হলেও লোকে তাতে লজ্জিত হবে না আর তারা ওলোন দড়ি হাতে সরুব্বাবিলকে দেখে ওরা খুব খুশী হবে, য়ে সমাপ্ত হওয়া নির্মাণ কাজ পরীক্ষা করছে এবং মাপ-জোক করছে| পাথরের য়ে সাতটি ধার তুমি এখন দেখলে, তা প্রভুর চক্ষুস্বরূপ- যা সব দিকে নজর রেখেছিল| পৃথিবীর সব কিছুই তারা দেখতে পায|” 11 তখন আমি (সখরিয়) তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, “বাতিদানের ডান ও বাম দিকের জলপাই গাছগুলি কি বোঝায?” 12 আমি তাঁকে আরও বললাম, “সোনার নল দুটির পাশে আমি জলপাই গাছের দুটি শাখা দেখলাম| য়েগুলোর মধ্যে দিয়ে সোনালী রঙের তেল বইছে- সেগুলিরই বা অর্থ কি?” 13 তখন দূত আমাকে বললেন, “তুমি কি জানো না এসবের অর্থ কি?”আমি বললাম, “মহাশয় জানি না|” 14 তিনি বললেন, “এর অর্থ হল এরা সেই দুই ব্যক্তিকে যারা সমস্ত পৃথিবীর প্রভুকে সেবা করার জন্য মনোনীত হয়েছে, তাদের প্রতিনিধিত্ব করছে|”
1 আমি আবার চোখ তুললাম এবং দেখলাম য়ে একটা হাতে লেখা পুঁথি বাতাসে উড়ছে| 2 দেবদূতটি আমাকে বললেন, “তুমি কি দেখছ?”আমি বললাম, “একটি গোটানো হাতে লেখা পুঁথি উড়ছে, য়েটা 20 হাত লম্বা এবং 10 হাত চওড়া|” 3 তিনি আমায় বললেন, “এই গোটানো হাতে লেখা পুঁথিতে অভিশাপ লেখা রয়েছে| হাতে লেখা পুঁথির একপাশে চোরদের জন্য অভিশাপ লেখা এবং অন্য পাশে সেইসব লোকদের জন্য অভিশাপ লেখা যারা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি করে| 4 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: “আমি চোরদের বাড়ী এবং যারা আমার নাম ব্যবহার করে মিথ্যা শপথ করে তাদের বাড়ী এই পুঁথি পাঠাব| এই পুঁথি সেই বাড়ীগুলিতে থাকবে এবং তাদের ধ্বংস করবে| এমনকি পাথর ও কাঠের পাত্রগুলিও এটি ধ্বংস করবে|” 5 য়ে দেবদূতটি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি বাইরে গেলেন এবং বললেন, “দেখ, কি আসছে?” 6 আমি বললাম, “আমি জানি না, এটা কি?”তিনি বললেন, “ওটা মাপার ঝুড়ি|” তিনি আরও বললেন, “এই দেশের লোকের পাপ মাপার জন্যই এই ঝুড়ি|” 7 ঝুড়ির সীসার তৈরী ঢাকনাটা খোলা হলে দেখা গেল তার মধ্যে এক স্ত্রীলোক| 8 দেবদূতটি আমায় বললেন, “ঐ স্ত্রীলোকটি অধর্মকে প্রতিনিধিত্ব করে|” তখন দেবদূতটি স্ত্রীলোকটিকে ঠেলে ঝুড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে তার ঢাকনাটি বন্ধ করে দিলেন| 9 তখন আমি ওপরের দিকে তাকিযে সারস পাখীর মতডানা সমেত দুই জন স্ত্রীলোককে দেখতে পেলাম| তারা নীচে উড়ে এল এবং তাদের পাখার বাতাসের সাহায্যে সেই ঝুড়িটাকে তুলে নিল| তারপর তারা ঝুড়িটাকে বহন করে বাতাসের মধ্যে দিয়ে উড়ে গেল| 10 তখন আমার সাথে আলাপচারী দেবদূতটিকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “ঝুড়িটিকে তারা কোথায বয়ে নিয়ে যাচ্ছে?” 11 দেবদূতটি উত্তর দিলেন, “তারা শিনিযর দেশে একটা বাড়ী তৈরী করবে এবং ঝুড়িটাকে তারা সেই বাড়ীর ভেতরে রাখবে|”
1 তারপর আমি আবার ওপরে তাকিযে দেখলাম চারটে রথ, তারা দুটি পিতলের পর্বতের মধ্য থেকে বের হয়ে আসছে| 2 প্রথম রথটি টানছিল লাল রঙের ঘোড়া| দ্বিতীয় রথটিকে টানছিল কালো রঙের ঘোড়া| 3 তৃতীয় রথটিকে টানছিল সাদা রঙের ঘোড়া আর লাল বিন্দু বিন্দু দাগওযালা ঘোড়াগুলি টানছিল চতুর্থ রথটিকে| 4 য়ে দেবদূতটি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন তাঁকে আমি জিজ্ঞেস করলাম, “মহাশয় এর অর্থ কি?” 5 দেবদূতটি বললেন, “এরা চারটি বাতাস, তারা পৃথিবীর প্রভুর কাছ থেকে সদ্য এসেছে| 6 কালো ঘোড়াগুলি যাবে উত্তর দিকে, লাল ঘোড়াগুলি যাবে পূর্বে, সাদা ঘোড়াগুলি যাবে পশ্চিমে এবং লাল বিন্দু বিন্দু দাগ দেওয়া ঘোড়াগুলি যাবে দক্ষিণে|” 7 লাল বিন্দু খচিত ঘোড়ারা তাদের অংশে পৃথিবীতে যাবার জন্য ব্যগ্র হয়ে উঠল, তাই দেবদূত তাদের বললেন, “যাও তোমরা সারা পৃথিবী ঘুরে এসো|” তাই তারা পৃথিবীর চারদিক ঘুরতে গেল| 8 তখন প্রভু আমাকে চিত্কার করে বললেন, “দেখ, য়ে ঘোড়াগুলি উত্তরে গিয়েছিল, তারা তাদের কাজ শেষ করে ফিরে এসেছে| তারা আমার আত্মাকে শান্ত করেছে তাই আমি আর রুদ্ধ নই!” 9 তখন আমি প্রভুর কাছ থেকে আরেকটি বার্তা পেলাম| তিনি বললেন, 10 “হিল্দয, টোবিয ও য়িদায বাবিলের বন্দী দশা থেকে ফিরে এসেছে| সেই লোকেদের কাছ থেকে তুমি রূপো ও সোনা সংগ্রহ কর এবং সফনিয়ের পুত্র য়োশিযের বাড়ী যাও| 11 সেই রূপো ও সোনা ব্যবহার করে একটি মুকুট তৈরী কর এবং যিহোষাদকের পুত্র, মহাযাজক যিহোশূয়কে মুকুট মণ্ডিত কর| তারপর যিহোশূয়কে এই বিষয়গুলি বল: 12 প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেন: ‘শাখা নামে এক মানুষ আছেন, তিনি শক্তিমান হয়ে উঠবেন, তিনি প্রভুর মন্দির গাঁথবেন| 13 তিনি প্রভুর মন্দির গাঁথবেন ও সম্মান গ্রহণ করবেন| তিনি সিংহাসনে বসে শাসন করবেন| আর একজন যাজক তার সিংহাসনের পাশে দাঁড়াবে| এই দুই জন একসাথে শান্তিতে কাজ করবে| 14 “হিল্দয, টোবিয, য়িদায এবং সফনিয়ের পুত্র য়োশিযের জন্য একটি স্মারক হিসেবে ঐ মুকুটটি তারা মন্দিরেই রাখবে| 15 দূরদেশে বসবাসকারী লোকেরাও এসে মন্দিরে নির্মাণ করবে| তখন তোমরা নিশ্চিতভাবে জানবে য়ে প্রভুই আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন| প্রভুর কথা অনুসারে কাজ করলে এই বিষয়গুলি ঘটবে|”
1 পারস্যের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের চতুর্থ বছরের নবম মাসের চতুর্থ দিনে সখরিয় প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলেন| 2 বৈথেলের লোকেরা শরেত্সর, রেগম্মেলক ও তার লোকেদের প্রভুর কাছে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পাঠিয়েছিলেন| 3 তারা সর্বশক্তিমান প্রভুর মন্দিরের যাজকগণের কাছে এবং ভাব্বাদীদের কাছে এলেন| ঐ লোকেরা তাদের রশ্ন জিজ্ঞেস করল: “অনেক বছর ধরে আমরা মন্দির ধ্বংস হয়ে যাবার দরুণ শোক করেছি| প্রত্যেক বছরের পঞ্চম মাসে আমরা উপবাসের জন্য বিশেষ সময় দিয়েছি| আমরা কি এই অনুশীলন চালিযে যাব?” 4 আমি সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলাম: 5 “এই দেশের যাজককে এবং অন্য লোকেদের বল: সত্তর বছর ধরে তোমরা পঞ্চম ও সপ্তম মাসে উপবাস করেছ| সেই উপবাস কি সত্যিই আমার জন্যে? না! তা নয়| 6 আর তোমরা যখন ভোজন পান করলে সেটাও কি আমার উদ্দেশ্যে করলে? তা নয়, বরং তোমাদেরই ভালোর জন্যে| 7 এই একই জিনিষ প্রদান করতে প্রভু তাঁর ভাব্বাদীদের ব্যবহার করেছিলেন| জেরুশালেম যখন উন্নত ও জনমানবে পূর্ণ ছিল তখনও তিনি এই কথাগুলি বলেছিলেন| যখন ঈশ্বর এই কথাগুলি বলেছিলেন তখন জেরুশালেমের আশেপাশের শহর নেগেভ এবং পশ্চিমের পাহাড়ের পাদদেশে লোকজন ছিল|” 8 সখরিযের কাছে প্রভুর বার্তা এই: 9 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: “যা কিছু ঠিক এবং ন্যায়সঙ্গত তোমরা অবশ্যই তা করবে| তোমরা একে অপরের প্রতি অবশ্যই দয়ালু ও কৃপাপূর্ণ হবে| 10 বিধ্বা, দরিদ্র, বিদেশী ও অনাথদের ওপর উত্পীড়ন কোরো না| অপরের অমঙ্গল করবার চিন্তা কোরো না|” 11 কিন্তু সেইসব লোকেরা শুনতে অস্বীকার করত| তিনি যা চাইতেন তা করতে তারা অস্বীকার করত| তারা কান বন্ধ করত বলে ঈশ্বরের কথা শুনতে পেতো না| 12 তারা ছিল একগুঁযে| প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর আত্মা দ্বারা ভাব্বাদীদের মাধ্যমে লোকেদের কাছে বার্তা পাঠাতেন| কিন্তু তারা শুনতো না| তাই সর্বশক্তিমান প্রভু রুদ্ধ হয়েছিলেন| 13 সর্বশক্তিমান প্রভু বললেন, “আমি তাদের ডাকলে তারা উত্তর দিল না| তাই এখন যদি তারা আমায় ডাকে, আমি তাদের উত্তর দেব না| 14 আমি তাদের বিরুদ্ধে জাতিগুলোকে ঝড়ের মত নিয়ে আসব| ঐসব জাতিদের তারা জানতও না| তারা দেশটি অতিক্রম করে গেলে সেটি ধ্বংসস্ুপে পরিণত হবে|”
1 সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা এল| 2 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন, “আমি সিয়োন পর্বতকে ভালোবাসি| আমি তাকে এতোই ভালোবাসি য়ে সে আমার প্রতি বিশ্বস্ত না হলে আমি তার ওপর খুব রেগে উঠলাম|” 3 প্রভু বলেছেন, “আমি সিয়োনে ফিরে এসেছি| আমি জেরুশালেমে বাস করছি| জেরুশালেমকে বলা হবে বিশ্বস্ত শহর| প্রভুর পর্বতকে বলা হবে পবিত্র পর্বত|” 4 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন, “প্রবীন ব্যক্তিদের আবার জেরুশালেমের রাস্তায় ঘাটে দেখা যাবে| দীর্ঘ জীবন লাভ করবে বলে লোকেদের হাঁটার জন্য লাঠির প্রযোজন হবে| 5 ছোট ছোট ছেলেমেযেদের খেলাধূলার কোলাহলে রাস্তাগুলো ভরে থাকবে| 6 অবশিষ্ট যারা থাকবে তারা এটাকে বিস্মযকর বলে গণ্য করবে!” প্রভু সর্বশক্তিমান এ কথা বলেছেন!” 7 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “দেখ পূর্ব ও পশ্চিমের দেশগুলি হতে আমি আমার লোকেদের উদ্ধার করব| 8 আমি তাদের এখানে ফিরিয়ে আনব, তারা জেরুশালেমে বাস করবে| তারা আমার লোক হবে এবং আমি তাদের বিশ্বস্ত ঈশ্বর হব|” 9 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “শক্তিমান হও! সর্বশক্তিমান প্রভুর মন্দিরের প্রস্তর স্থাপন করবার সময় ভাব্বাদীরা এই বার্তা প্রচার করেছিলেন| আজও তোমরা সেই একই বার্তা শুনছ| 10 সেই সময়ের পূর্বে লোকেদের মজুর বা গবাদি পশু ভাড়া করবার টাকা ছিল না| লোকেদের পক্ষে ভ্রমণ বা যাতাযাত করাও নিরাপদ ছিল না| সংকট থেকে লোকে কোন সময়েই নিস্তার পেত না| আমি প্রতিটি লোককে অন্য লোকেদের বিরোধী করে তুলেছিলাম| 11 কিন্তু এখন সেইরকম নয়| অবশিষ্ট যারা রয়েছে তাদের জন্য সেরকম হবে না|” প্রভু সর্বশক্তিমান এইসব কথা বলেন| 12 “এই লোকেরা শান্তিতে রোপণ করবে| দ্রাক্ষাও ফলানো হবে| দেশে ভাল ফসল হবে এবং জমি পর্য়াপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি পাবে| আমি এই সব কিছুই আমার লোকেদের দেব| 13 “অন্য জাতিগণ অভিশাপ দেবার জন্য ইস্রায়েল ও যিহূদার নাম উদাহরণস্বরূপ ব্যবহার করত| কিন্তু আমি ইস্রায়েল ও যিহূদাকে রক্ষা করব এবং তাদের নাম আশীর্বাদজনক হয়ে উঠবে| সুতরাং ভয় পেও না, শক্তিমান হও!” 14 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “তোমার পূর্বপুরুষেরা আমায় রুদ্ধ করেছিল, তাই আমি তাদের ধ্বংস করব স্থির করেছিলাম| আমি আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করিনি|” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 15 “এখন আমি আমার মন পরিবর্তন করেছি আর জেরুশালেম ও যিহূদার লোকেদের মঙ্গল করবার বিষয় স্থির করেছি| সুতরাং ভয় পেও না| 16 কিন্তু তোমাদের অবশ্যই এগুলো করতে হবে: তোমার প্রতিবেশীকে সত্য কথা বলো| আদালতে লোকের বিচার করবার সময় এমন সিদ্ধান্ত নেবে যা সত্য, ঠিক এবং যা লোকেদের মধ্যে শান্তি আনে| 17 তোমার প্রতিবেশীকে আঘাত করার জন্য কোন পরিকল্পনা করো না| মিথ্যা প্রতিশ্রুতি কোর না! এইসব কাজ করে আনন্দ পেও না কারণ আমি এইসব জিনিষ ঘৃণা করি!” প্রভু এইসব কথা বলেছেন| 18 আমি সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলাম| 19 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম মাসের বিশেষ দিনে তোমরা উপবাস করতে থাকো| সেইসব শোকের দিন আনন্দের দিনে পরিণত হবে| সেইসব দিন, আনন্দের হবে ও আশীর্বাদ ধন্য হয়ে উঠবে| সত্য ও শান্তিকে তোমাদের ভালোবাসা উচিত্!” 20 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “ভবিষ্যতে বহু শহর থেকে লোকেরা জেরুশালেমে আসবে| 21 বিভিন্ন শহরের লোকেরা একে অপরকে অভ্য়র্থনা জানাবে| তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলবে, ‘আমরা সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে ও তাঁর উপাসনা করতে যাচ্ছি|’ অন্যরা বলবে, ‘তোমাদের সঙ্গে আমরাও কি য়োগদান করতে পারি?”‘ 22 অনেক লোক এবং অনেক বলবান জাতি জেরুশালেমে সর্বশক্তিমান প্রভুর উপাসনা করতে ও তাঁর অনুগ্রহের অন্বেষণ করতে আসবে| 23 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন, “সেই সময়, বিদেশ থেকে বিভিন্ন ভাষাভাষী দশজন বিদেশী একজন ইহুদীর কাছে এসে তার কাপড় টেনে ধরে বলবে, ‘আমরা শুনেছি য়ে ঈশ্বর আপনার সঙ্গে রয়েছেন| আমরা কি এসে আপনার সঙ্গে উপাসনা করতে পারি?”‘
1 ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি বার্তা| এ হল হদ্রক দেশ এবং তার রাজধানী দম্মেশকের বিরুদ্ধে প্রভুর বার্তা, “ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীরাই একমাত্র পরিবারগোষ্ঠী নয় যারা ঈশ্বর সম্বন্ধে সচেতন| প্রত্যেকেই সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের দিকে তাকায| 2 এই বার্তাটি হমাত্-এর বিরুদ্ধে| হমাত্ হদ্রক শহরের সীমা| এই বার্তাটি সোর ও সীদোনের বিরুদ্ধে যদিও সেই দেশের লোকেরা জ্ঞানী এবং দক্ষ| 3 সোরকে একটি দুর্গের মত করে নির্মাণ করা হয়েছিল| সেখানকার লোকেরা এত রূপো সংগ্রহ করেছে য়ে তা ধূলোর মত অগণিত এবং সোনা ও মাটির মত সাধারণ হয়ে পড়েছে| 4 কিন্তু প্রভু আমাদের সদাপ্রভু তার সবটাই নিয়ে নেবেন| তিনি তার শক্তিশালী নৌবহর ধ্বংস করবেন এবং শহরটিকে আগুন দ্বারা ধ্বংস করবেন! 5 “অস্কিলোনের লোকেরা এইসব দেখে ভয় পাবে| ঘসার লোকেরা ভয়ে কাঁপবে| ইএোণর লোকেরা এইসব ঘটতে দেখে সমস্ত আশা হারিয়ে ফেলবে| ঘসায আর কোন রাজা থাকবে না| অস্কিলোনে কেউ বাস করবে না| 6 অবৈধ সন্তানেরা অস্দোদের রাজা হয়ে বসবে| আমি পলেষ্টীয়দের দর্প চূর্ণ করব| 7 তাদের মুখ আর দাঁত থেকে আমি য়ে মাংসতে তখনও রক্ত লেগেছিল এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ খাবার সরিয়ে ফেলব| অবশিষ্ট পলেষ্টীয়রা আমার লোকেদের একটি অংশ বলে গণ্য হবে| তারা যিহূদাতে আরেকটি পরিবারগোষ্ঠী হবে| যিবূষীয়রা য়েমন করেছিল, তেমনিভাবে ইএোণর লোকেরা আমার লোকেদের একটি অংশ হবে| 8 আমার মন্দিরকে রক্ষা করবার জন্য আমি সৈন্যদের বিরুদ্ধে মন্দিরের চারিদিকে শিবির স্থাপন করব| আমি শএু সেনাকে এর ওপর দিয়ে অতিরম করতে দেব না| আমি এখন আমার নিজের চোখ দিয়ে লক্ষ্য রাখছি|” 9 সিয়োন, উল্লাস কর! জেরুশালেমের লোকেরা, আনন্দে চিত্কার কর! দেখ, তোমাদের রাজা তোমাদের কাছে আসছেন! তিনিই সেই ধার্মিক রাজা, তিনিই সেই বিজয়ী রাজা| কিন্তু তিনি নম্র| তিনি একটি খচচরের পিঠে চড়ে আসছেন| একটি ভারবাহী গাধার বাচচার ওপর চড়ে আসছেন| 10 রাজা বলেন, “আমি ইফ্রয়িমের রথগুলি এবং জেরুশালেমের অশ্বগুলিকেও সরিয়ে ফেলব| আমি যুদ্ধে ব্যবহার করবার ধনু ভেঙ্গে ফেলব|” রাজা জাতিগুলির কাছে শান্তির সংবাদ আনবেন| তিনি সাগর থেকে সাগরে রাজত্ব করবেন| ফরাত্ নদী থেকে পৃথিবীর দূরতম প্রান্ত পর্য়ন্ত| 11 জেরুশালেম, তোমার চুক্তি রক্তের মধ্যে সীলমোহর করা হয়েছিল| তাই আমি তোমার বন্দীদের শূন্য আধার থেকে রক্ষা করেছি| 12 বন্দীরা, তোমাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাও! এখন তোমাদের আশার কিছু বাকী রয়েছে| আমি আবার এই দ্বিতীয়বার বলছি আমি তোমাদের কাছে ফিরে আসছি! 13 যিহূদা, আমি তোমাকে ধনুকের মত ব্যবহার করব| ইফ্রয়িম, আমি তোমাকে তীরের মত ব্যবহার করব| ইস্রায়েল, আমি তোমাকে গ্রীসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তরবারির মত ব্যবহার করব| 14 প্রভু তাদের সামনে দর্শন দেবেন এবং তাঁর তীরগুলি বিদ্য়ুতের মত ছুঁড়বেন| প্রভু আমার সদাপ্রভু শিঙা বাজাবেন আর সেনারা মরুভূমির ধূলোর ঝড়ের মত সামনে ধেযে যাবে| 15 সর্বশক্তিমান প্রভু তাদের প্রতিরক্ষা করবেন| সেনারা পাথর দিয়ে শএুদের পরাজিত করবে| তারা তাদের শএুদের রক্ত দ্রাক্ষারসের মত প্রবাহিত করিযে তাদের হত্যা করবে| এটা হবে সেই রক্তের মত যা বেদীর কোণগুলোতে ছুঁড়ে ফেলা হয়! 16 সেই সময়ে, য়েমন একজন মেষপালক তার মেষদের রক্ষা করে তেমনিভাবে প্রভু তাঁর লোকেদের রক্ষা করবেন| তারা তাঁর কাছে অত্যন্ত মূল্যবান হবে| তাঁর হাতে তারা হবে চাকচিক্যময় গযনার মত| 17 সবকিছু মঙ্গলময় ও সুন্দর হবে| শস্য এবং দ্রাক্ষা হবে প্রচুর, এবং সমস্ত যুবক-যুবতী সেগুলো খেয়ে এবং নতুন দ্রাক্ষারস পান করে শক্তিশালী হয়ে উঠবে!
1 প্রভুর কাছে বসন্তকালে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা কর| প্রভু বজ্র পাঠাবেন এবং বৃষ্টি পড়বে| প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেতে শস্য বৃদ্ধির জন্য ঈশ্বর বৃষ্টি দেন| 2 লোকে মূর্ত্তি ও যাদুর মাধ্যমে ভবিষ্যত্ জানতে চেষ্টা করে| কিন্তু সেটা কোন কাজের নয়| যাদুকররা সবসময় তাদের স্বপ্ন ও দর্শন সম্পর্কে কথা বলে কিন্তু সেগুলো সবই নিছক মিথ্যা| তাই লোকেরা সাহায্যের জন্য ভুল পথে চালিত মেষের মত এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং তাদের চালনা করবার জন্য কোন মেষপালক নেই| 3 প্রভু বলেন, “আমি মেষপালকদের প্রতি অত্যন্ত রুদ্ধ| আমি তাদের শাস্তি দেব| ঐ নেতারা আমার লোকেদের জন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য|” (যিহূদার লোকেরা ঈশ্বরের পাল| ঈশ্বর তাদের যত্ন নেন, ঠিক য়েমন একজন সৈন্য তার সুন্দর যুদ্ধের অশ্বের যত্ন নেয|) 4 “কোণের পাথর, তাঁবুর কীলক, যুদ্ধের ধনু এবং আধিকারিকরা একসঙ্গে আসবে| 5 তারা হবে য়োদ্ধারা শএু সৈন্যবাহিনীর ওপর রাস্তা ঘাটে কাদা মাড়িয়ে চলে যাবার মত| তারা যখন লড়াই করবে প্রভু তাদের সঙ্গে থাকবেন| তারা অশ্বারোহী সৈন্যদেরও হারাবে| 6 আমি যিহূদার পরিবারকে বলবান করব| যুদ্ধ জেতার জন্য আমি য়োষেফের পরিবারকে সাহায্য করব| আমি তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনব| তাদের এমন সান্ত্বনা দেব মনে হবে আমি য়েন কখনই তাদের ছেড়ে যাই নি| আমিই প্রভু তাদের ঈশ্বর তাদের সাহায্য করব| 7 ইফ্রয়িমের লোকেরা য়োদ্ধাদের মত খুশী হবে, যারা পান করবার জন্য প্রচুর দ্রাক্ষারস পেয়েছে| তাদের ছেলেমেযেরাও উল্লাস করবে| তাদের হৃদয় প্রভুতে আনন্দিত হয়ে উঠবে| 8 “আমি শিস্ দিয়ে তাদের সবাইকে ডাকব| আমি তাদের সংগ্রহ করব| আমি তাদের সত্যিই রক্ষা করব এবং তারা অতীতের মত বংশবৃদ্ধি করবে| 9 হ্যাঁ, আমি আমার লোকেদের বিভিন্ন জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি| সেইসব দূরবর্তী স্থানে তারা আমায় স্মরণ করবে| তারা ও তাদের সন্তানেরা জীবন্ত ফিরে আসবে| 10 আমি তাদের মিশর ও অশূর থেকে ফিরিয়ে আনব, তাদের গিলিয়দ ও লিবানোন অঞ্চলে নিয়ে আসব| এবং তাদের জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকবে না” 11 (তিনি দুর্য়োগপূর্ণ সমুদ্র পার হবেন এবং দুরন্ত জলরাশিতে আঘাত হানবেন| নীল নদীর গভীরতম জল তিনি শুকিয়ে ফেলবেন| অশূরের গর্বের পতন হবে এবং মিশরের ক্ষমতা নিয়ে নেওয়া হবে|) 12 প্রভু তাঁর লোকেদের শক্তিশালী করবেন এবং তারা তাঁর কর্ত্তৃত্বে এবং নামে বাঁচবে| প্রভু এইসব কথা বলেছেন|
1 লিবানোন, তোমার ফটকগুলি খোল, আগুন তোমার এরস বৃক্ষগুলি পুড়িয়ে শেষ করে দিক | 2 বৃহত্ এরস বৃক্ষগুলিকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দেবদারু বৃক্ষরা কাঁদবে| ঐসব দৃঢ় বৃক্ষগুলিকে নিয়ে যাওয়া হবে| বাশনের ওক গাছগুলি দুষ্প্রবেশ্য বন কেটে ফেলা হয়েছে বলে কাঁদবে| 3 শোন মেষপালকরা কাঁদছে কারণ তারা তাদের পশুচারণভূমি হারিয়েছে| যুব সিংহশাবকগুলির গর্জন শোন| যর্দন নদীর ধারের ঘন বনটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে| 4 প্রভু আমার ঈশ্বর এই কথাগুলি বলেন, “য়ে মেষগুলিকে হত্যা করবার জন্য পালন করা হচ্ছে তাদের যত্ন নাও| 5 যারা সেগুলো কেনে ও হত্যা করে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে না| য়ে সব ব্যবসায়ী মেষগুলো বিক্রিী করেছে তারা বলে, ‘প্রভুর প্রশংসা কর, আমি ধনী হয়ে উঠেছি!’ মেষপালকরা তাদের মেষদের জন্য দুঃখিত হয় নি| 6 আমি এই দেশে য়ে লোকেরা থাকে তাদের প্রতি সহানুভূতিপূর্ণও হব না” প্রভু এইসব কথা বলেছেন, “আমি প্রত্যেককে তার প্রতিবেশী ও রাজার দ্বারা অপব্যবহৃত হতে দেব| আমি তাদের দেশ ধ্বংস করতে দেব| আমি তা বন্ধ করব না!” 7 তাই আমি সেই সব হতভাগ্য মেষের যত্ন নিলাম, যাদের হত্যা করার জন্য পালন করা হয়েছিল| আমি এই কাজের জন্য দুটি লাঠি নিলাম| একটি লাঠির নাম দিলাম মনোরম, আর অন্যটির নাম দিলাম ঐক্য| তারপর আমি মেষদের যত্ন নিতে শুরু করলাম| 8 এক মাসের মধ্যে আমি তিনজন মেষপালককে বরখাস্ত করলাম| আমি মেষদের প্রতি অধৈর্য় হলাম এবং তারাও আমাকে ঘৃণা করতে শুরু করল| 9 তখন আমি বললাম, “আমি চললাম, আমি তোমাদের যত্ন নেব না| য়ে সব লোকেরা মরতে বসেছে, তারা মরুক | যারা ধ্বংস হতে চলেছে তাদের ধ্বংস হোক | এবং যারা বাকী থাকবে তারা একে অপরকে ধ্বংস করুক|” 10 এরপর আমি “মনোরম” নামক লাঠিটা নিলাম এবং তা ভেঙ্গে ফেললাম| সমস্ত লোকেদের সঙ্গে ঈশ্বরের চুক্তি য়ে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গিয়েছিল তা দেখাবার জন্য আমি এটা করলাম| 11 তাই, সেই দিনে চুক্তিটি এবং সেই হতভাগ্য মেষেরা যারা আমাকে লক্ষ্য করছিল, তারা জানল য়ে এই বার্তা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছিল| 12 তখন আমি বললাম, “তুমি যদি আমায় বেতন দিতে চাও তো দাও, নতুবা দিও না!” তাই তারা আমায় 30টি রূপোর মুদ্রা দিল| 13 তখন প্রভু আমায় বললেন, “তাদের চোখে আমি ঐরকম মূল্যবান| ঐ টাকা মন্দিরের অর্থভাণ্ডারে ছুঁড়ে ফেল|” তাই আমি সেই 30টি রূপোর মুদ্রা নিয়ে প্রভুর মন্দিরের অর্থ ভাণ্ডারে ছুঁড়ে দিলাম| 14 এরপর আমি ঐক্য নামক লাঠিটা নিয়ে দুই টুকরো করে ভাঙলাম| যিহূদা ও ইস্রায়েলের মধ্যে য়ে আর ঐক্য নেই সেটা তাদের বোঝাবার জন্য আমি এটা করলাম| 15 তখন প্রভু আমায় বললেন, “এখন সেইসব জিনিস নাও যা কেবলমাত্র একজন মূর্খ মেষপালক ব্যবহার করে| 16 এটা থেকেই তারা বুঝবে য়ে আমি আমার দেশে একজন নতুন মেষপালক আনব| য়ে মেষেরা মারা যাচ্ছে তাদের যত্ন এই যুবক নিতে পারবে না| সে আহত মেষদের সুস্থ করতে পারবে না| যারা বেঁচে রয়েছে তাদের সে খাওয়াতে পারবে না| সুস্থ সবল মেষদের মেরে ফেলা হবে এবং তাদের মাংস সম্পূর্ণরূপে খেয়ে ফেলা হবে| কেবল তাদের ক্ষুরগুলো পড়ে থাকবে|” 17 ওহে আমার অকর্মণ্য মেষপালক, তোমরা আমার মেষদের ত্যাগ করেছ| ওকে শাস্তি দাও! ওর ডান চোখে ও হাতে তরবারি দিয়ে আঘাত কর| তার ডান হাত নিষ্কর্মা হয়ে যাবে| তার ডান চোখ অন্ধ হবে|
1 ইস্রায়েল সম্বন্ধে প্রভুর করুণ বার্তা| প্রভু আকাশকে বিস্তৃত করেছেন এবং পৃথিবীকে তার ভিত্তির ওপর বসিযেছেন| তিনিই সেই জন যিনি লোকেদের মধ্যে আত্মা রেখেছেন| আর প্রভুই এইসব কথা বলেছেন| 2 “দেখ, জেরুশালেমকে আমি তার প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে একটি বিষের পাত্রে পরিণত করব| ঐ দেশগুলো জেরুশালেম শহরকে আরমণ করবে| সমগ্র যিহূদা অবরুদ্ধ হবে| 3 আমি জেরুশালেমকে একটা ভারী পাথরের মত করে দেব| য়ে কেউ তাকে নিতে চেষ্টা করবে সেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে| তারা কাটা পড়বে এবং তার দ্বারা তাদের আঁচড় লাগবে| তবু পৃথিবীর সমস্ত জাতি জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে একত্রে আসবে| 4 সেই সময়ে আমি ঘোড়াদের ভীত করব এবং ঘোড়সওযাররা আতঙ্কগ্রস্ত হবে| আমি শএুপক্ষের সমস্ত ঘোড়াকে অন্ধ করে দেব, কিন্তু আমার চোখ খোলা থাকবে আর আমি যিহূদা পরিবারের উপর নজর রাখব| 5 যিহূদা পরিবারের নেতারা লোকেদের উত্সাহিত করবে| তারা বলবে, ‘প্রভু সর্বশক্তিমানই আমাদের ঈশ্বর| তিনিই আমাদের বলবান করেন|’ 6 সেই সময়, আমি ঐ নেতাদের বনভূমির একটি আগুনের মত করে দেব| আগুন য়েমন খড়কে পুড়িয়ে ধ্বংস করে, ঠিক তেমনিভাবে তারা তাদের শএুদের সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেবে| তাদের চারিদিকের শএুদেরও তারা ধ্বংস করবে| যাতে জেরুশালেমের লোকেরা আরাম করতে পারে|” 7 প্রভু প্রথমে যিহূদার লোকেদের রক্ষা করবেন, আর তাই জেরুশালেমের লোকেরা আর বেশী বড়াই করতে পারবে না| দায়ূদের পরিবার ও জেরুশালেমে বসবাসকারী অন্য লোকেরাও বড়াই করে বলতে পারবে না য়ে তারা যিহূদার অন্য লোকেদের চাইতে ভাল| 8 কিন্তু প্রভু জেরুশালেমের লোকদের প্রতিরক্ষা করবেন| এমনকি সবচেয়ে জবরজঙ লোকও দায়ূদের মত মহাবীর সৈন্য হয়ে উঠবে| দায়ূদ পরিবারের লোকেরা দেবতাদের তুল্য হবে| প্রভুর দূতদের মত, তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে এগিয়ে দেবে| 9 প্রভু বলেন, “সেই সময়ে জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে য়েসব জাতি আসবে তাদের আমি ধ্বংস করব| 10 আমি দায়ূদের ও পরিবারের সদস্যদের এবং জেরুশালেমে বাসকারী লোকেদের আমি ক্ষমাশীল ও দয়ায় ভরা আত্মা দেব| তারা আমার দিকে তাকাবে, সেই একজন যাকে তারা বিদ্ধ করেছিল এবং তারা বিলাপ করবে| একমাত্র পুত্রের বিয়োগে লোকে য়েমন শোক করে তারা সেরকম তীব্রভাবে কাঁদবে| একজনের প্রথমজাত পুত্রের মৃত্যুতে লোকে য়েমন শোক করে, তারা তেমনই শোক করবে| 11 সেসময় জেরুশালেমে রোদন ও মহাশোকের দিন উপস্থিত হবে| মগিদ্দোন উপত্যকায় হদদ্-রিম্মোণের মৃত্যুতে লোকে য়েমন রোদন করেছিল এসময় সেরকমই হবে| 12 প্রতিটি পরিবার নিজে থেকেই দুঃখে শোক করবে| দায়ূদ পরিবারের পুরুষ সদস্যরা নিজে থেকেই শোক করবে এবং তাদের স্ত্রীরা নিজে থেকেই রোদন করবে| নাথন পরিবারের পুরুষ সদস্যরা নিজের থেকেই শোক করবে এবং তাদের স্ত্রীরা পৃথক পৃথক ভাবে কাঁদবে| 13 লেবির পরিবারের পুরুষ সদস্যরা নিজের থেকেই শোক করবে ও তাদের স্ত্রীরাও নিজে থেকেই কাঁদবে| শিমিযন পরিবারের পুরুষ সদস্যরা নিজে থেকেই শোক করবে এবং তাদের স্ত্রীরাও নিজে থেকেই কাঁদবে| 14 অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও সেই একই ব্যাপার হবে| পুরুষেরা ও স্ত্রীলোকেরা নিজে থেকেই কাঁদবে|”
1 সেইদিন দায়ূদ পরিবারের সদস্যদের জন্য ও জেরুশালেমে বসবাসকারী অন্যান্য লোকেদের জন্য এক নতুন ঝর্ণা খোলা হবে| এই ঝর্ণাটি হবে পাপ ও অশুদ্ধি থেকে শুদ্ধিকরণের নিমিত্ত| 2 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “সেইসময় আমি পৃথিবী থেকে মূর্ত্তিসমূহের নাম কেটে দেব| ভ্রান্ত ভাব্বাদীদের আর অশুদ্ধ আত্মাদের সরিয়ে দেব| লোকেরা এমনকি তাদের নামও মনে করবে না| এবং আমি ভ্রান্ত ভাব্বাদী ও অশুচি আত্মাদের পৃথিবী থেকে দূর করব| 3 যদি কেউ ভাব্বাণী অব্যাহত রাখে, তবে তাকে শাস্তি পেতে হবে| এমনকি তার পিতামাতাও তাকে বলবে, ‘প্রভুর নামে তুমিও মিথ্যা কথা বলছ|’ সে ভাব্বাণী করছে বলে তার মাতা পিতাই তাকে বিদ্ধ করে হত্যা করবে| 4 সেই সময়, ভাব্বাদীরা তাদের দর্শন ও ভাব্বাণী সম্বন্ধে লজ্জিত হবে| তারা নিজেদের ভাব্বাদী বলে সনাক্ত করবার জন্য ভাব্বাদীদের নিমিত্ত মোটা পোষাক পরবে না| তারা লোককে ঠকাবার জন্য ঐ পোষাকগুলো পরবে না| 5 তারা বলবে, ‘আমি একজন ভাব্বাদী নই| আমি একজন কৃষক, এবং ছোট বেলা থেকেই আমি মাঠে কৃষি কাজ করেছি|’ 6 কিন্তু অন্য লোকেরা বলবে, ‘কিন্তু তোমার হাতের ঐ আঘাতগুলি কিসের?’ সে তখন বলবে, ‘আমি আমার বন্ধুর বাড়ী মার খেয়েছিলাম|”‘ 7 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “আমার তরবারি মেষপালকদের আঘাত করুক! সেটা আমার বন্ধুকে আঘাত করুক! মেষপালকদের আঘাত কর এবং মেষেরা পলায়ন করবে| এবং আমি সেই ক্ষুদ্রগণকে শাস্তি দেব| 8 দেশের দুই-তৃতীয়াংশ লোক আঘাতে মারা যাবে কিন্তু এক-তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকবে| 9 তখন আমি ঐ অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশ লোকেদের পরীক্ষা করব| আমি তাদের বিভিন্ন সংকটে ফেলব| সেগুলো হবে তাদের অগ্নিপরীক্ষার মত ঠিক য়েমন লোকেরা আগুন ব্যবহার করে রূপোকে খাঁটি করতে অথবা সোনা খাঁটি কিনা তা পরীক্ষা করতে| তখন তারা আমার নামে ডাকবে আর আমি তাদের ডাকে সাড়া দেব| আমি বলব, ‘তোমরা আমার লোক|’ আর তারা বলবে, ‘প্রভু আমাদের ঈশ্বর|”‘
1 দেখ, বিচারের জন্য প্রভুর বিশেষ দিন আসছে| আর য়ে সম্পদ তুমি লুঠ করছ তা তোমার শহরে ভাগ করা হবে| 2 জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য আমি সমস্ত জাতিকে জড়ো করব| শএুরা শহর অধিকার করবে এবং ঘর বাড়ি ধ্বংস করবে| স্ত্রীলোকদের ওপর বলাত্কার করা হবে এবং অর্ধেক লোককে বন্দী করে নির্বাসনে নিয়ে যাওয়া হবে| বাদবাকীরা পেছনে পড়ে থাকবে| 3 তখন সেইসব জাতির সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য প্রভু নিজে যাবেন অতীতে য়েমন তিনি যুদ্ধ করেছিলেন| 4 সেই সময় তিনি জৈতুন পর্বতের ওপরে দাঁড়াবেন, য়ে পর্বত জেরুশালেমের পূর্বে অবস্থিত| জৈতুন পর্বত চিরে যাবে এবং পর্বতের একভাগ উত্তরে, অপরভাগ দক্ষিণে সরে যাবে| পশ্চিম থেকে পূর্বে এক গভীর উপত্যকার সৃষ্টি হবে| 5 সেই উপত্যকা তোমার নিকটবর্তী হলে তোমরা পালাবার চেষ্টা করবে| য়েমন যিহূদার রাজা উষিযের সময়ে ভূমিকম্পের দিনে তোমরা দৌড়েছিলে সেইরকম দৌড়ে পালাবে| ঈশ্বর আসবেন, এবং তাঁর সমস্ত পবিত্র লোকেরা তাঁর সঙ্গে থাকবে| 6 সেই দিন হবে বিশেষ দিন| সেই দিন আলো, ঠাণ্ডা বা হিম বলে কিছু থাকবে না| কেবল প্রভু জানেন তা কিভাবে হবে, কিন্তু দিন বা রাত বলে কিছু থাকবে না| সাধারণতঃ অন্ধকার যখন নেমে আসে সেই সময়তেও আলো থাকবে| 7 8 সেই দিন জেরুশালেম থেকে জীবন্ত জলের ধারা বইবে| সেই জলধারা দুটি স্রোতে ভাগ হয়ে এক ভাগ পূর্ব দিকে মৃত সাগরে এবং অপর ভাগ পশ্চিমে ভূমধ্যসাগরে বইবে| সেই জলের ধারা সারা বছর ধরে থাকবে, কি গ্রীষ্মে, কি শীতে| 9 সেই সময়, প্রভু সমস্ত পৃথিবীর রাজা হবেন| সেই দিন প্রভু হবেন একজন| তাঁর নাম হবে একটিই| 10 সেই সময়, জেরুশালেমের চারধার মরুভূমিতে পরিণত হবে| গেবা থেকে নেগেভের রিম্মোণ পর্য়ন্ত মরুভূমির মত হয়ে যাবে| কিন্তু জেরুশালেমের পুরো শহরটি আবার নির্মাণ করা হবে| বিন্যামীন ফটক থেকে প্রথম ফটক (কোণের ফটক) পর্য়ন্ত এবং হননেলের দুর্গ থেকে রাজার দ্রাক্ষা কুণ্ড পর্য়ন্ত| 11 কোন শএু আর তাদের ধ্বংস করতে সেখানে আসবে না| জেরুশালেম নিরাপদ হবে| 12 কিন্তু য়ে সমস্ত জাতি জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল, প্রভু তাদের শাস্তি দেবেন| তাদের মাঝে তিনি প্লেগ রোগটি পাঠাবেন| জীবিতকালেই তাদের মাংস পচতে শুরু করবে| তাদের চোখগুলো কোটরে পচবে আর জিব মুখের মধ্যে পচতে শুরু করবে| 13 এই মারাত্মক রোগ শএু শিবিরগুলিতে ছড়িয়ে যাবে| সেই মারাত্মক রোগ তাদের ঘোড়া, উট এবং গাধাদের মধ্যেও ছড়িয়ে যাবে|সেই সময়, ঐ লোকেরা সত্যিই প্রভুকে ভয় পাবে| প্রত্যেকটি লোক অন্য লোকের হাত টেনে ধরবে আর তারা একে অপরের সঙ্গে লড়াই করবে| এমনকি যিহূদাও জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে| সমস্ত লোকের কাছ থেকে সোনা, রূপো ও কাপড় চোপড় জড়ো করার পরও এটা ঘটবে| 14 15 16 জেরুশালেমে যারা যুদ্ধ করতে এসেছিল, তার থেকে বেঁচে থাকা লোকেরা প্রতি বছর সেই রাজা যিনি সর্বশক্তিমান প্রভু, তাঁর উপাসনা করতে আসবে| এবং কুটিরবাস পর্ব পালন করতে জেরুশালেম পর্য়ন্ত যাবে| 17 আর পৃথিবীর কোন পরিবার যদি জেরুশালেমে সর্বশক্তিমান প্রভুর উপাসনা করতে না যায় তবে প্রভু তাদের বৃষ্টি দেবেন না| 18 যদি মিশরের কোন পরিবার কুটিরবাস পর্ব পালন করতে না আসে তবে প্রভু শএু জাতিদের ক্ষেত্রে য়েমন করেছিল তেমনি তাদেরও সেই মারাত্মক রোগে আএান্ত করবেন| 19 এই শাস্তি হবে মিশরীয়দের জন্য এবং অন্য য়ে কোন জাতি যারা কুটিরবাস পর্ব পালন করতে না আসে তাদের জন্য| 20 সেই সময়, প্রভু সব কিছুর মালিক হবেন| এমনকি ঘোড়ার গলার ঘণ্টিগুলিতেও লেখা থাকবে, ‘প্রভুর জন্য পবিত্র|’আর প্রভুর মন্দিরে ব্যবহৃত সমস্ত বাসন-কোষন বেদীর বাটীর মত পাত্রগুলির মতোই গুরুত্বপূর্ণ হবে| 21 প্রকৃতপক্ষে জেরুশালেম ও যিহূদার প্রতিটি পাত্রেই এই কথা লেখা থাকবে| প্রভু সর্বশক্তিমানের জন্য পবিত্র| নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে য়ে সমস্ত লোক এসেছিল এসে সেই সমস্ত পাত্র নিয়ে তাতে তাদের বিশেষ খাবার রান্না করবে|সেই সময়, সর্বশক্তিমান প্রভুর মন্দিরে কোন ব্যবসায়ীকে আর দেখতে পাওয়া যাবে না|
1 মালাখির মাধ্যমে ইস্রায়েলের প্রতি ঈশ্বরের এক ভাববাণীরূপ বার্তা| 2 প্রভু বলেছেন, “আমি তোমাদের ভালোবাসি|”কিন্তু তোমরা জিজ্ঞেস কর, “আপনি য়ে আমাদের ভালোবাসেন তার প্রমাণ কি?”প্রভু বলেন, “এষৌ কি যাকোবের ভাই নয়? তবু আমি যাকোবকে ভালবেসেছি| 3 কিন্তু আমি এষৌকে ঘৃণা করতাম| আমি তার পর্বতগুলি ধ্বংস করেছি এবং তার দেশকে- শিয়ালের বাসস্থানে পরিণত করেছি|” 4 ইদোমের লোকরা বলতে পারে, “যদিও আমরা ধ্বংস হয়েছিলাম কিন্তু আমরা ফিরে গিয়ে আবার আমাদের শহরগুলো গড়ব|”কিন্তু সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন, “তারা আবার গড়তে পারে কিন্তু আমি আবার তা ভেঙ্গে ফেলব!” তাই লোকরা ইদোমকে বলবে একটি দুষ্ট দেশ এবং একটি জাতি যাকে প্রভু চির কালের তরে ঘৃণা করেন|” 5 তোমাদের চোখ তা দেখবে এবং তোমরা বলবে, “প্রভু মহান, এমন কি ইস্রায়েলের সীমার বাইরেও!” 6 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “পুত্র তার পিতাকে সম্মান করে এবং দাস তার মনিবকে সম্মান করে| কিন্তু আমি যদি পিতা হই তবে কেন আমি সম্মান পাবো না? আমি তোমাদের প্রভু| কিন্তু কেন তোমরা আমাকে সম্মান কর না? তোমরা, যাজকরা আমার নামকে সম্মান করছ না|”কিন্তু তোমরা বল, “আমরা কি এমন কিছু করেছি যা প্রমাণ করে য়ে আমরা আপনার নামকে সম্মান করি না?” 7 প্রভু বলেছেন, “তোমরা আমার বেদীতে অশুচি রুটি নিয়ে আসো|”কিন্তু তোমরা জিজ্ঞাসা কর, “কি করে আমরা আপনাকে অশুচি করেছি?”প্রভু বলেছেন, “প্রভুর বেদী শ্রদ্ধার উপযুক্ত নয়’ এই বলে তোমরা আমার বেদীকে সম্মান করছ না|” 8 এটা কি খারাপ কাজ নয় য়ে তোমরা উত্সর্গ করার জন্য অন্ধ পশুদের নিয়ে আসো? তোমরা উত্সর্গের জন্য যখন খোঁড়া ও অসুস্থ পশু নিয়ে আসো, সেটা কি খারাপ কাজ নয়? তোমাদের রাজ্যপালকে অসুস্থ পশুসমূহ দেবার চেষ্টা করে দেখ তো, তিনি কি তা গ্রহণ করবেন? তিনি কি তোমাদের ওপর খুশী হবেন!” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| 9 “যাজকরা, তোমরা প্রভুকে আমাদের প্রতি ভালো হতে অনুরোধ কর| কিন্তু তিনি তোমাদের কথা শোনেন না| তোমরাই এর জন্য দাযী|” সর্বশক্তিমান প্রভু এই সব কথা বলেন| 10 “তোমাদের মধ্যে কেউ মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিক্ যাতে তোমরা আমার বেদীর ওপর অকেজো আলো জ্বালাতে না পারো| আমি তোমাদের ওপর সন্তুষ্ট নই এবং আমি তোমাদের হাত থেকে কোন নৈবেদ্য নেবো না|” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| 11 সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: “সমস্ত পৃথিবীতে লোকে আমার নাম সম্মান করে এবং আমার জন্য শুদ্ধ ধূপ এবং নৈবেদ্য সমূহ নিয়ে আসে| কারণ আমার নাম সমস্ত জাতির মধ্যে সম্মানিত|” 12 “কিন্তু তোমরা ‘প্রভুর বেদী অশুদ্ধ’ একথা বলে দেখাও য়ে তোমরা আমার নামকে শ্রদ্ধা কর না এবং বেদীর ওপর নিবেদন করা খাদ্যও তোমরা চাও না, এতে তোমরা আমার নামের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখাও| 13 তোমরা এও বলো, কি আপদ! সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন, তোমরা এমন পশু উত্সর্গ করার জন্য উপহার স্বরূপ নিয়ে আস যা চুরি করা, খোঁড়া অথবা অসুস্থ| তোমাদের হাতে করে আনা এই উপহার কি আমি গ্রহণ করব?” প্রভু এই কথাগুলি বলেন| 14 “সেই প্রতারক অভিশপ্ত, যার পালে পুরুষ পশু রযেছে আর তা দিতে মানত করা সত্ত্বেও সে প্রভুর উদ্দেশ্যে এমন পশু উত্সর্গ করে যা দোষ যুক্ত| আমিই এই কথা বলছি কারণ আমি শক্তিমান রাজা এবং সমস্ত জাতির লোক আমাকে ভয় করে|” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন|
1 “এখন ওহে যাজকরা, এই নিয়ম তোমাদের জন্য| 2 যদি তোমরা এর অবাধ্য হও এবং আমাকে সম্মান করার এই রয়োজনীয় ব্যাপারটিকে যদি গুরুত্ব না দাও তবে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে অভিশাপ পাঠাব, সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| তোমরা আশীর্বাদ দিলে আমি তা অভিশাপে পরিণত করব, আর আমি তাদের অভিশাপ দিয়েছি কারণ তোমরা এই বিষযটার ওপর গুরুত্ব দাও না|” 3 “দেখ, আমি তোমার উত্তরপুরুষদের শাস্তি দেব| আমি তোমাদের মুখে উত্সব নৈবেদ্য থেকে জন্তুদের বীষ্ঠা লেপে দেবো এবং তোমাদের ওগুলোর সঙ্গে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে| 4 তখন তোমরা জানবে য়ে আমি এই আদেশ দিচ্ছি যাতে লেবির সঙ্গে আমার চুক্তি চলতে থাকে|” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| 5 প্রভু বলেছেন, “লেবির সঙ্গে আমার চুক্তি ছিল জীবন ও শান্তির চুক্তি| সে আমায সম্মান করে এবং আমার নামে ভীত হয| 6 লেবি সত্য শিক্ষা দিয়েছে| সে কখনও মন্দ জিনিস শেখায় নি| সে ছিল সত্ এবং শান্তি ভালবাসত এবং সে অনেক লোককে মন্দ কাজ করা থেকে ফিরিযে এনেছিল| 7 আমি এসব বলি কারণ লোকে জ্ঞানের প্রয়োজনে যাজক খোঁজে আর ঈশ্বরের আজ্ঞা শিক্ষা করতে তারা তার কাছে যায়, কারণ সেই তো ঈশ্বরের বার্তাবাহক|” 8 কিন্তু প্রভু বলেছেন: “যাজকরা আমার পথ থেকে সরে গিয়েছিল এবং অনেক লোককে বিধি অস্বীকার করতে বাধ্য করেছে| তোমরা লেবির সঙ্গে আমার চুক্তি ধ্বংস করেছ|” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| 9 “য়েহেতু তোমরা আমার পথগুলি অনুসরণ করনি এবং আমার নীতি শিক্ষায় পক্ষপাতিত্ব করেছ সেহেতু আমি তোমাদের অস্বীকৃত এবং অপমানিত করাব!” 10 আমাদের সকলেরই সেই এক পিতা| একই ঈশ্বর আমাদের তৈরী করেছেন| তাহলে কেন লোকে তাদের ভাইদের ঠকিযে ঈশ্বর য়ে চুক্তি তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে করেছিলেন তাকে অসম্মান করে? 11 যিহূদার লোকরা বিশ্বাসঘাতকদের মত ব্যবহার করেছিল| জেরুশালেম এবং ইস্রায়েলের লোকরা মারাত্মক জিনিষ করেছে| যিহূদার লোক ঈশ্বরের পবিত্র মন্দির, য়েটাকে ঈশ্বর ভালবাসতেন, নষ্ট করেছে| যিহূদার লোকরা বিদেশী রমনীদের বিয়ে করেছিল যারা বিদেশী দেবতা সমূহের অধিকারপ্রাপ্ত এবং ঐ সব বিদেশী দেবতাদের পূজো শুরু করেছিল| 12 প্রভু যাকোবের পরিবার থেকে ঐ সমস্ত লোকদের সরিয়ে দেবেন| এমন কি যদিও সেই ব্যক্তি সর্বশক্তিমান প্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার আনে| 13 তোমরা কাঁদতে পারো এবং প্রভুর বেদী চোখের জলে ঢেকে দিতে পারো, কিন্তু প্রভু তোমাদের উপহার গ্রহণ করবেন না এবং তোমরা যা কিছু আনো তাতে তিনি খুশী হবেন না| 14 আর তোমরা বলে থাকো, “এর কারণ কি?” কারণ তোমরা তোমাদের স্ত্রীর বিরুদ্ধে য়ে সব মন্দ কাজ করেছ তা প্রভু দেখেছেন| সেই স্ত্রী যদিও তোমার বিশ্বস্ত সঙ্গী ছিল এবং তোমার নিয়মের স্ত্রী ছিল তবু তুমি তার সঙ্গে প্রতারণা করেছ| 15 ঈশ্বর চান য়ে স্বামী ও স্ত্রী একদেহ ও এক আত্মাবিশিষ্ট হোক| তবেই তাদের পবিত্র সন্তানসন্ততি হবে| সুতরাং সেই আত্মিক একাত্মতা রক্ষা কর| তোমার স্ত্রীকে ঠকিও না| সে তোমার য়ৌবনের স্ত্রী| 16 ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর বলেন, “আমি বিবাহ বিচ্ছেদ এবং পুরুষরা য়ে সমস্ত নিষ্ঠুর কাজ করে তা ঘৃণা করি|1 সুতরাং অবিশ্বস্ত হয়ো না, তোমাদের নিজ নিজ আত্মাকে সাবধানতাসহ রক্ষা কর|” 17 তোমরা ভুল শিক্ষা দিয়েছ| সেই ভুল শিক্ষাগুলি প্রভুকে খুব ক্লান্ত করেছে| তোমরা শিখিয়েছ য়ে, য়ে সব ব্যক্তি কুকর্ম করে প্রভু তাদের ভালবাসেন| তোমরা বলছ য়ে ঈশ্বর মনে করেন সেই লোকরা ভালো এবং তোমরা শিখিয়েছ য়ে কুকর্ম করবার জন্য ঈশ্বর লোকদের শাস্তি দেন না|
1 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “দেখ আমি আমার বার্তাবাহককে পাঠাচ্ছি এবং সে আমার আগে আগে আমার জন্য পথ পরিষ্কার করবে| তোমরা য়ে প্রভুর অন্বেষণ করছ, তিনি হঠাত্ তাঁর মন্দিরে আসবেন| হ্যাঁ, নতুন চুক্তির বার্তাবাহক যাঁকে তোমরা চাও, তিনি আসছেন| 2 “কিন্তু তিনি যখন আসবেন তখন কে তা সহ্য করতে পারবে? আর তিনি দর্শন দিলে কে উঠে দাঁড়াতে পারবে? কারণ তিনি শোধন করার আগুনের মত ও ধোপার ক্ষারযুক্ত সাবানের মত| 3 রৌপ্যকার য়েমন করে রূপো নিখাদ করে তেমন করে তিনি লেবীয় উত্তরপুরুষদের শুদ্ধ করবেন| তিনি সন্তানদের সোনা রূপোর মতো পরিষ্কার করবেন আর তারাই প্রভুকে ঠিক মত নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে| 4 তখন যিহূদার ও জেরুশালেমের ধার্মিকতার উপহারগুলি প্রভু গ্রাহ্য করবেন, য়েমন বহু আগে অতীতে হত| 5 আমি তোমাদের কাছে বিচার করতে আসব এবং যারা যাদুবিদ্যা অভ্যাস করে, যারা ব্যভিচারী, যারা মিথ্যা ভাবে প্রতিশ্রুতি করে, যারা মজুরদের ঠকায়, বিধ্বা ও পিতৃহীনদের যারা সাহায্য করে না, যারা বিদেশীদের প্রতি অন্যায় করে আর আমাকে ভয় পায় না তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেব!” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| 6 “আমিই প্রভু, আমার পরিবর্তন নেই| তোমরা যাকোবের সন্তানরা তাই সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হচ্ছ না| 7 তোমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকেই তোমরা আমার বিধি ব্যবস্থা থেকে দূরে সরে পড়েছ|” সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “তোমরা আমার কাছে ফিরে এস তাহলে আমিও তোমাদের কাছে ফিরে যাব|”কিন্তু তোমরা বলছ, “কিভাবে ফিরব?” 8 “কোন লোক কি ঈশ্বরের কাছ থেকে চুরি করতে পারে? কিন্তু তোমরা আমার কাছ থেকে চুরি করছ|তোমরা বল, “আমরা তোমার কাছ থেকে কি চুরি করেছি?” তোমাদের জিনিষগুলোর থেকে এক দশমাংশ আমাকে দেওয়া উচিত্ ছিল| তোমাদের উচিত্ ছিল আমাকে বিশেষ উপহার দেওয়া| কিন্তু তোমরা আমাকে সেইগুলি দাওনি| 9 তোমাদের পুরো জাতি আমার কাছ থেকে জিনিষ চুরি করেছে| তোমরা সবাই অভিশাপে শাপগ্রস্ত| 10 তোমাদের উত্পন্ন শস্যের, পশুপালের এবং আযের এক দশমাংশ কোষাগারে নিয়ে এসো যাতে মন্দিরে সঞ্চয়ের জোগান থাকে| আর এতে আমায় পরীক্ষা করে দেখ আমি আকাশের দরজা খুলে তোমাদের পর্য়াপ্ত পরিমাণে আশীর্বাদ করি কি না| 11 আমি ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গকে তোমার ক্ষেত্র ধ্বংস না করতে আদেশ দেব| তারা তোমার ক্ষেতের ফসল নষ্ট করবে না| দ্রাক্ষালতাগুলি দ্রাক্ষা উত্পন্ন করবে| সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| 12 “সমস্ত জাতির লোকরা তোমাদের প্রশংসা করবে কারণ তোমরা একটি সুন্দর এবং চমত্কার দেশ পাবে|” সর্বশক্তিমান প্রভু এই সব কথা বলেছেন| 13 প্রভু বলেন, “তোমরা আমার বিরুদ্ধে কড়া কড়া কথা বলেছ|”কিন্তু তোমরা জিজ্ঞেস করছ, “আপনার বিরুদ্ধে আমরা কি বলেছি?” 14 তোমরা বলছ, “প্রভুর উপাসনা করা বৃথা| প্রভুর কথা অনুসারে আমরা কাজ করেছি বটে কিন্তু তা কোন উপকারে আসেনি| অন্ত্যোষ্টি ক্রিয়ার সময় লোকে য়েমন শোক করে আমরা আমাদের পাপের জন্য তেমনি শোক করেছি কিন্তু তাতে লাভ হয়নি| 15 আমাদের মনে হয় যারা গর্ব করে তারাই সুখী; দুষ্ট লোকরা কৃতকার্য়্য় এবং প্রতিষ্ঠিত হয়| তারা মন্দ কাজ করে ঈশ্বরের ধৈর্য়্য় পরীক্ষা করে আর ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেন না|” 16 তখন ঈশ্বরের অনুগামীরা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলল আর প্রভু ওদের কথা শুনলেন| প্রভুর সামনে একটি ব্বিরণী পুস্তক আছে যার মধ্যে যারা তাঁকে শ্রদ্ধা করেছিল এবং তাঁর নামকে সম্মান করেছিল তার নামের তালিকা আছে| 17 প্রভু বলেছিলেন, “যখন আমি পৃথিবীকে বিচার করব ঐ লোকরা সেই দিন আমার হবে| সে সময় আমি তাদের প্রতি দয়া করব, য়েমন করে পিতা তার সেবায় রত পুত্রের প্রতি করে| 18 তখন তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে এবং ধার্মিক ও দুষ্টের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখবে| ঈশ্বরের সেবাকারীদের সঙ্গে যারা তার সেবা করে না তাদের তফাত বুঝতে পারবে|”
1 “বিচারের সেই দিন আসছে| সেই দিন হবে তপ্ত চুল্লীর মত| সমস্ত গর্বিত লোকদের শাস্তি দেওয়া হবে, সেই দুষ্ট লোকরা খড়ের মত জ্বলবে| সেই দিন তারা ঝোপের মত আগুনে জ্বলবে- একটাও শাখা কি শেকড় অবশিষ্ট থাকবে না|” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন| 2 “কিন্তু তোমরা যারা আমাকে অনুসরণ কর তাদের ওপর ধার্মিকতা সূর্য়োদয়ের মত উজ্জ্বল হবে| তা সূর্য়ের কিরণের মত আরোগ্য় ক্ষমতা আনবে| খোঁযাড় থেকে ছেড়ে দেওয়া বাছুরের মতো তোমরা মুক্ত ও আনন্দিত হবে| 3 তারপর তোমরা দুষ্ট লোকদের পায়ের তলায় পিষে দেবে| দুষ্ট লোকরা তোমাদের পায়ের তলায় ছাই হয়ে যাবে| যখন বিচারের সময় আসবে তখন আমি এই সমস্ত জিনিষ ঘটাব|” প্রভু সর্বশক্তিমান এই সব কথা বলেন| 4 “মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন কর| মোশি আমার দাস ছিল| হোরেব পর্বতে আমিই তাকে ঐসব বিধি ও নিয়মগুলি দিয়েছিলাম| ঐ বিধিগুলি ইস্রায়েলের সব লোকদের জন্য|” 5 প্রভু বলেছিলেন, “দেখ, আমি ভাববাদী এলিয়কে তোমাদের কাছে পাঠাব| তিনি প্রভুর সেই ভয়ঙ্কর বিচারের দিনের আগে আসবেন| 6 এলিয় পিতামাতাদের তাঁদের সন্তানদের কাছে আসতে সাহায্য করবেন| এটা অবশ্যই ঘটবে নতুবা আমি (ঈশ্বর) এসে তোমাদের দেশ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করব!”
The New Testament of our Lord and Saviour Jesus Christ
1 এই হল যীশু খ্রীষ্টের বংশ তালিকা৷ ইনি ছিলেন রাজা দায়ূদের বংশধর, দায়ূদ ছিলেন অব্রাহামের বংশধর৷ 2 অব্রাহামের ছেলে ইসহাক৷ ইসহাকের ছেলে যাকোব৷ যাকোবের ছেলে যিহূদা ও তার ভাইরা৷ 3 যিহূদার ছেলে পেরস ও সেরহ৷ এদের মায়ের নাম তামর৷ পেরসের ছেলে হিষ্রোণ৷ হিষ্রোণের ছেলে রাম৷ 4 রামের ছেলে অম্মীনাদব৷ অম্মীনাদবের ছেলে নহশোন৷ নহশোনের ছেলে সল্মোন৷ 5 সল্মোনের ছেলে বোয়স৷ এর মায়ের নাম রাহব৷ বোয়সের ছেলে ওবেদ৷ এর মায়ের নাম রূত্৷ ওবেদের ছেলে যিশয়৷ 6 যিশয়ের ছেলে রাজা দায়ূদ৷ দায়ূদের ছেলে রাজা শলোমন৷ এর মা ছিলেন ঊরিয়ের বিধবা স্ত্রী৷ 7 শলোমনের ছেলে রহবিয়াম৷ রহবিয়ামের ছেলে অবিয়৷ অবিয়ের ছেলে আসা৷ 8 আসার ছেলে যিহোশাফট৷ যিহোশাফটের ছেলে য়োরাম৷ য়োরামের ছেলে ঊষিয়৷ 9 উষিয়ের ছেলে য়োথম৷ য়োথমের ছেলে আহস৷ আহসের ছেলে হিষ্কিয়৷ 10 হিষ্কিয়ের ছেলে মনঃশি৷ মনঃশির ছেলে আমোন৷ আমোনের ছেলে য়োশিয়৷ 11 য়োশিয়ের ছেলে যিকনিয় ও তার ভাইরা৷ বাবিলে ইহুদীদের নির্বাসনের সময় এঁরা জন্মেছিলেন৷ 12 যিকনিয়ের ছেলে শল্টীয়েল৷ ইনি বাবিলে নির্বাসনের পর জন্মেছিলেন৷ শল্টীয়েলের ছেলে সরুব্বাবিল৷ 13 সরুব্বাবিলের ছেলে অবীহূদ৷ অবীহূদের ছেলে ইলীয়াকীম৷ ইলীয়াকীমের ছেলে আসোর৷ 14 আসোরের ছেলে সাদোক৷ সাদোকের ছেলে আখীম৷ আখীমের ছেলে ইলীহূদ৷ 15 ইলীহূদের ছেলে ইলিয়াসর৷ ইলিয়াসরের ছেলে মত্তন৷ মত্তনের ছেলে যাকোব৷ 16 যাকোবের ছেলে য়োষেফ৷ এই য়োষেফই ছিলেন মরিয়মের স্বামী এবং মরিয়মের গর্ভে যীশুর জন্ম হয়, যাঁকে মশীহ বা খ্রীষ্ট বলে৷ 17 এইভাবে অব্রাহাম থেকে দায়ূদ পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ৷ দায়ূদের পর থেকে বাবিলে নির্বাসন পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ এবং বাবিলে নির্বাসনের পর থেকে খ্রীষ্টের আগমন পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ৷ 18 এই হল যীশু খ্রীষ্টের জন্ম সংক্রান্ত বিবরণ: য়োষেফের সঙ্গে তাঁর মা মরিয়মের বাগদান হয়েছিল; কিন্তু তাঁদের বিয়ের আগেই জানতে পারা গেল য়ে পবিত্র আত্মার শক্তিতে মরিয়ম গর্ভবতী হয়েছেন৷ 19 তাঁর ভাবী স্বামী য়োষেফ ন্যায়পরায়ণ লোক ছিলেন৷ তিনি মরিয়মকে লোক চক্ষে লজ্জায় ফেলতে চাইলেন না, তাই তিনি মরিয়মের সাথে বিবাহের এই বাগদান বাতিল করে গোপনে তাকে ত্যাগ করতে চাইলেন৷ 20 তিনি যখন এসব কথা চিন্তা করছেন, তখন প্রভুর এক দূত স্বপ্নে তাঁকে দেখা দিয়ে বললেন, "য়োষেফ, দায়ূদের সন্তান, মরিয়মকে তোমার স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে ভয় করো না, কারণ তার গর্ভে য়ে সন্তান এসেছে, তা পবিত্র আত্মার শক্তিতেই হয়েছে৷ 21 দেখ, সে এক পুত্র সন্তান প্রসব করবে, তুমি তাঁর নাম রেখো যীশু, কারণ তিনি তাঁর লোকদের তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করবেন৷" 22 এই সব ঘটেছিল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভু যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়৷ 23 শোন! "এক কুমারী গর্ভবতী হবে, আর সে এক পুত্র সন্তান প্রসব করবে, তারা তাঁকে ইম্মানূয়েল যার অর্থ ‘আমাদের সঙ্গে ঈশ্বর’ বলে ডাকবে৷ 24 য়োষেফ ঘুম থেকে উঠে প্রভুর দূতের আদেশ অনুসারে কাজ করলেন৷ তিনি মরিয়মকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে গেলেন৷ 25 কিন্তু মরিয়মের সেই সন্তানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত য়োষেফ মরিয়মের সঙ্গে সহবাস করলেন না৷ য়োষেফ সেই সন্তানের নাম রাখলেন যীশু৷
1 হেরোদ যখন রাজা ছিলেন, সেই সময় যিহূদিয়ার বৈত্লেহমে যীশুর জন্ম হয়৷ সেই সময় প্রাচ্য থেকে কয়েকজন পণ্ডিত জেরুশালেমে এসে যীশুর খোঁজ করতে লাগলেন৷ 2 তাঁরা এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইহুদীদের য়ে নতুন রাজা জন্মেছেন তিনি কোথায়? কারণ পূর্ব দিকে আকাশে আমরা তাঁর তারা দেখে তাঁকে প্রণাম জানাতে এসেছি৷’ 3 রাজা হেরোদ একথা শুনে খুব বিচলিত হলেন এবং তাঁর সঙ্গে জেরুশালেমের সব লোক বিচলিত হল৷ 4 তখন তিনি ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষক ছিলেন, তাঁদের ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, মশীহ (খ্রীষ্ট) কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন? 5 তাঁরা হেরোদকে বললেন, ‘যিহূদিয়া প্রদেশের বৈত্লেহমে, কারণ ভাববাদী সেরকমই লিখে গেছেন: 6 ‘আর তুমি যিহূদা প্রদেশের বৈত্লেহম, তুমি যিহূদার শাসনকর্তাদের চোখে কোন অংশে নগন্য নও, কারণ তোমার মধ্য থেকে একজন শাসনকর্তা উঠবেন যিনি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে চরাবেন৷'" মীখা 5:2 7 তখন হেরোদ সেই পণ্ডিতদের সঙ্গে একান্তে দেখা করার জন্য তাঁদের ডেকে পাঠালেন৷ তিনি তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিলেন ঠিক কোন সময় তারাটা দেখা গিয়েছিল৷ 8 এরপর হেরোদ তাদের বৈত্লেহমে পাঠিয়ে দিলেন আর বললেন, ‘দেখ, তোমরা সেখানে গিয়ে ভাল করে সেই শিশুর খোঁজ কর; আর খোঁজ পেলে, আমাকে জানিয়ে য়েও,. য়েন আমিও সেখানে গিয়ে তাঁকে প্রণাম করতে পারি৷’ 9 তাঁরা রাজার কথা শুনে রওনা দিলেন৷ তাঁরা পূর্ব দিকে আকাশে য়ে তারাটা উঠতে দেখেছিলেন, সেটা তাঁদের আগে আগে চলল এবং শিশুটি য়েখানে ছিলেন তার ওপরে থামল৷ 10 তাঁরা সেই তারাটি দেখে আনন্দে আত্মহারা হলেন৷ 11 পরে সেই ঘরের মধ্যে ঢুকে শিশুটি ও তাঁর মা মরিয়মকে দেখতে পেয়ে তাঁরা মাথা নত করে তাঁকে প্রণাম করলেন ও তাঁর উপাসনা করলেন৷ তারপর তাঁদের উপহার সামগ্রী খুলে বের করে তাঁকে সোনা, সুগন্ধি গুগ্গুল ও সুগন্ধি নির্যাস উপহার দিলেন৷ 12 এরপর ঈশ্বর স্বপ্নে তাঁদের সাবধান করে দিলেন য়েন তাঁরা হেরোদের কাছে ফিরে না যান, তাই তাঁরা অন্য পথে নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন৷ 13 তাঁরা চলে যাবার পর প্রভুর এক দূত স্বপ্নে য়োষেফকে দেখা দিয়ে বললেন, ‘ওঠো!’ শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও৷ যতদিন না আমি তোমাদের বলি, তোমরা সেখানেই থেকো, কারণ এই শিশুটিকে মেরে ফেলার জন্য হেরোদ এর খোঁজ করবে৷’ 14 তখন য়োষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে রাতে মিশরে রওনা হলেন৷ 15 আর হেরোদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন৷ এরূপ ঘটল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভুর কথা সফল হয়; প্রভু বললেন, ‘আমি মিশর থেকে আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম৷’ 16 হেরোদ যখন দেখলেন য়ে সেই পণ্ডিতরা তাঁকে বোকা বানিয়েছে, তখন তিনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন৷ তিনি সেই পণ্ডিতদের কাছ থেকে য়ে সময়ের কথা জেনেছিলেন, সেই হিসাব মতো দু’বছর ও তার কম বয়সের যত ছেলে বৈত্লেহম ও তার আশেপাশের অঞ্চলে ছিল, সকলকে হত্যা করার হুকুম দিলেন৷ 17 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র মাধ্যমে ঈশ্বর য়ে কথা বলেছিলেন তা পূর্ণ হল: 18 ‘রামায় একটা শব্দ শোনা গেল, কান্নার রোল ও তীব্র হাহাকার, রাহেল তাঁর সন্তানদের জন্য কাঁদছেন৷ তিনি কিছুতেই শান্ত হতে চাইছেন না, কারণ তারা কেউ আর বেঁচে নেই৷’ যিরমিয় 31:15 19 হেরোদ মারা যাবার পর প্রভুর এক দূত মিশরে য়োষেফকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বললেন, 20 ‘ওঠো! এই শিশু ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে ফিরে যাও, কারণ যাঁরা এই ছেলের প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছিল তারা সকলে মারা গেছে৷’ 21 তখন য়োষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে গেলেন৷ 22 কিন্তু য়োষেফ যখন শুনলেন য়ে হেরোদের জায়গায় তাঁর পুত্র আর্খিলায় যিহূদিয়ার রাজা হয়েছে, তখন তিনি সেখানে ফিরে যেতে ভয় পেলেন৷ পরে আর এক স্বপ্নে তাঁকে সাবধান করে দেওয়া হল, 23 তখন তিনি গালীলে ফিরে নাসরত্ নগরে বসবাস করতে লাগলেন৷ এই রকম ঘটল য়েন ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: তিনি নাসরতীয়বলে আখ্যাত হলেন৷
1 সেই সময় বাপ্তিস্মদাতা য়োহন এসে যিহূদিয়ার প্রান্তর এলাকায় প্রচার করতে লাগলেন৷ 2 তিনি বললেন, ‘তোমরা মন ফেরাও, দেখ স্বর্গরাজ্য এসে পড়ল৷’ 3 এই য়োহনের বিষয়েই ভাববাদী যিশাইয় বলেছিলেন: ‘প্রান্তরে এক উচ্চ রব শোনা যাচ্ছে, ‘তোমরা প্রভুর পথ প্রস্তুত কর; য়ে পথ দিয়ে তিনি যাবেন তা সমান কর৷’ যিশাইয় 40:3 4 য়োহন উটের লোমের তৈরী পোশাক পরতেন, কোমরে চামড়ার বেল্ট বাঁধতেন৷পঙ্গপালও বনমধু ছিল তাঁর খাদ্য৷ 5 জেরুশালেম, সমগ্র যিহূদিয়া ও যর্দনের আশপাশের অঞ্চলের লোকেরা প্রান্তরে তাঁর কাছে আসতে লাগল৷ 6 তারা এসে নিজেদের পাপ স্বীকার করত আর তিনি তাদের যর্দন নদীতে বাপ্তাইজ করতেন৷ 7 য়োহন যখন দেখলেন য়ে অনেক ফরীশীও সদ্দূকীতাঁর কাছে বাপ্তিস্মের জন্য আসছে, তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা সাপের বাচ্চারা! ঈশ্বরের আসন্ন ক্রোধ থেকে নিষ্কৃতি পাবার জন্য কে তোমাদের চেতনা দিল? 8 তোমরা কাজে দেখাও, যাতে বোঝা যায় য়ে তোমরা সত্যিই মন ফিরিয়েছ৷ 9 আর নিজেরা মনে মনে একথা চিন্তা করে গর্ব করো না য়ে, ‘আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম৷’ আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বর এই পাথরগুলিকেও অব্রাহামের সন্তানে পরিণত করতে পারেন৷ 10 প্রতিটি গাছের গোড়াতে কুড়ুল লাগানোই আছে৷ আর য়ে গাছে ভাল ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হবে৷’ 11 ‘তোমরা মন ফিরিয়েছ বলে আমি তোমাদের জলে বাপ্তাইজ করছি৷ আমার পরে একজন আসছেন, যিনি আমার থেকে মহান, তাঁর জুতো জোড়া বইবার য়োগ্যও আমি নই ৷ তিনি পবিত্র আত্মায় ও আগুনে তোমাদের বাপ্তাইজ করবেন৷ 12 তাঁর কুলা তাঁর হাতেই আছে, তাঁর খামার তিনি পরিষ্কার করবেন৷ তিনি তাঁর গম গোলায় তুলবেন৷ কিন্তু য়ে আগুন কখনও নেভে না সেই আগুনে তূষ পুড়িয়ে ফেলবেন৷’ 13 সেই সময় যীশু গালীল থেকে যর্দন নদীর ধারে এলেন৷ তিনি য়োহনের কাছে বাপ্তিস্মের জন্য এগিয়ে গেলেন৷ 14 কিন্তু য়োহন তাঁকে বাধা দিতে চেষ্টা করলেন৷ য়োহন বললেন, ‘আমারই বরং আপনার কাছে বাপ্তাইজ হওয়া উচিত৷ আর আপনি কি না আমার কাছে এসেছেন?’ 15 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘এখন এরকমই হতে দাও, কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা এই ভাবেই আমাদের পূর্ণ করা উচিত৷’ তখন য়োহন যীশুকে বাপ্তাইজ করতে রাজী হলেন৷ 16 যীশু বাপ্তাইজিত হয়ে জল থেকে উঠে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সামনে আকাশ খুলে গেল, আর তিনি দেখলেন ঈশ্বরের আত্মা কপোতের মতো নেমে তাঁর ওপরে আসছেন৷ 17 স্বর্গ থেকে একটি স্বর শোনা গেল, সেই স্বর বলল, ‘এই আমার প্রিয় পুত্র, এর প্রতি আমি অত্যন্ত প্রীত৷’
1 এরপর দিয়াবল য়েন যীশুকে পরীক্ষা করতে পারে তাই আত্মা যীশুকে প্রান্তরে নিয়ে গেলেন৷ 2 একটানা চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সেখানে উপোস করে কাটানোর পর যীশু ক্ষুধিত হলেন৷ 3 তখন সেই পরীক্ষক দিয়াবল তাঁর কাছে এসে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এই পাথরগুলিকে রুটিতে পরিণত হতে বল৷’ 4 কিন্তু যীশু এর উত্তরে বললেন: ‘শাস্ত্রে একথা লেখা আছে, ‘মানুষ কেবল রুটিতে বাঁচে না, কিন্তু ঈশ্বরের মুখের প্রত্যেকটি বাক্যেই বাঁচে৷’দ্বিতীয় বিবরণ 8:3 5 দিয়াবল তখন পবিত্র নগরী জেরুশালেমের মন্দিরের চূড়ায় যীশুকে নিয়ে গেল; 6 আর যীশুকে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে লাফ দিয়ে নীচে পড়, কারণ শাস্ত্রে তো একথা লেখা আছে: ‘তিনি তাঁর স্বর্গদূতদের তোমার উপর দৃষ্টি রাখতে আদেশ দেবেন আর তারা তোমাকে তুলে ধরবেন, য়েন পাথরের উপর পড়ে তোমার পায়ে আঘাত না লাগে৷'" গীতসংহিতা 91:11-12 7 যীশু তখন তাকে বললেন, ‘শাস্ত্রে একথাও লেখা আছে, ‘তোমার প্রভু ঈশ্বরকে তুমি পরীক্ষা করবে না৷’ দ্বিতীয় বিবরণ 6:16 8 এরপর দিয়াবল আবার তাঁকে খুব উঁচু একটা পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে জগতের সমস্ত রাজ্য ও তার সম্পদ দেখাল৷ 9 পরে দিয়াবল যীশুকে বলল, ‘তুমি যদি আমার সামনে মাথা নত করে আমার উপাসনা কর, তবে এসবই আমি তোমায় দেব৷’ 10 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘দূর হও শয়তান! কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে,‘তোমরা অবশ্যই প্রভু ঈশ্বরেরই উপাসনা করবে, একমাত্র তাঁরই সেবা করবে৷'" দ্বিতীয় বিবরণ 6:13 11 তখন দিয়াবল তাঁকে ছেড়েচলে গেল আর স্বর্গদূতরা এসে যীশুর সেবা করলেন৷ 12 যীশু যখন শুনলেন য়োহনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে, তখন তিনি গালীলে চলে গেলেন৷ 13 তিনি নাসরতে থাকলেন না, সেখান থেকে সবূলূন ও নপ্তালির সীমানার মধ্যে গালীল হ্রদের ধারে কফরনাহূমে গিয়ে বাস করতে লাগলেন৷ 14 এই সকল ঘটল যাতে ভাববাদী যিশাইয়র মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: 15 সাগরের পথে যর্দনের পশ্চিমপারে সবূলূন ও নপ্তালি দেশ, অইহুদীদের গালীল৷ 16 য়ে লোকরা অন্ধকারে বাস করে, তারা মহাজ্যোতি দেখতে পেল, আর যাঁরা মৃত্যুছায়ার দেশে থাকে, তাদের উপর আলোর উদয় হল৷’যিশাইয় 9:1-2 17 সেই সময় থেকে যীশু এই বলে প্রচার করতে শুরু করলেন, ‘তোমরা মন ফেরাও, কারণ স্বর্গরাজ্য কাছে এসে গেছে৷’ 18 যীশু যখন গালীল হ্রদের ধার দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি দুই ভাইকে দেখতে পেলেন, শিমোন যার অন্য নাম পিতর ও তাঁর ভাই আন্দ্রিয়৷ তাঁরা তখন ্ব্রদে জাল ফেলছিলেন৷ 19 যীশু তাদের বললেন, ‘আমার সঙ্গে চল, মাছ নয়, কেমন করে মানুষ ধরতে হয়, আমি তা তোমাদের শেখাব৷’ 20 শিমোন এবং আন্দরিয় তখনই জাল ফেলে যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 21 সেখান থেকে যীশু আরও এগিয়ে গেলে আরো দুজন লোককে দেখতে পেলেন৷ সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও তাঁর ভাইয়োহন৷ যীশু দেখলেন, ‘তাঁরা তাদের বাবার সঙ্গে নৌকাতে জাল সারাচ্ছেন৷ যীশু তাঁদের ডাকলেন, 22 তাঁরা তখনইনৌকা ও তাঁদের বাবাকে ছেড়ে যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 23 যীশু গালীলের সব জায়গায় ঘুরে ঘুরে, ইহুদীদের সমাজ-গৃহে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন এবং সকলের কাছে স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন৷ তিনি লোকদের মধ্যে নানারকম রোগ-ব্যাধি ভাল করতে থাকলেন৷ 24 সমস্ত সুরিয়া দেশে তাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ল, ফলে লোকরা নানা রোগে অসুস্থ রোগীদের সুস্থ করার জন্য তাঁর কাছে নিয়ে এলো, য়েমন ব্যথা-বেদনাগ্রস্ত, ভূতে পাওয়া, মৃগীরোগী ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত, আর তিনি তাদের সকলকেই ভাল করলেন৷ 25 গালীল, দিকাপলি, জেরুশালেম, যিহূদিয়া ও যর্দনের ওপার থেকেও বহুলোক তাঁর পিছনে পিছনে চলল৷
1 যীশু অনেক লোকের ভীড় দেখে একটা পাহাড়ের ওপর উঠে গেলেন৷ তিনি সেখানে বসলে শিষ্যরা তাঁর কাছে এলেন৷ 2 এরপর তিনি তাঁদের কাছে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন, বললেন: 3 ‘ধন্য সেই লোকেরা যাঁরা আত্মায় নত-নম্র, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই৷ 4 ধন্য সেইলোকেরা যাঁরা শোক করে, কারণ তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা পাবে৷ 5 বিনযী লোকেরা ধন্য৷ তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত দেশের অধিকার লাভ করবে৷’ 6 ধন্য সেইলোকেরা, যাঁরা ন্যায়পরায়ণতার জন্য ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত কারণ তারা তৃপ্ত হবে৷ 7 যাঁরা দয়াবান তারা ধন্য, কারণ তারা দয়া পাবে৷ যাদের অন্তর পরিশুদ্ধ তারা ধন্য, কারণ তারা ঈশ্বরের দর্শন পাবে৷ 8 ধন্য তারা যাঁরা তাদের চিন্তায় পরিশুদ্ধ, কারণ তারা ঈশ্বরের সঙ্গে থাকবে৷ 9 ধন্য তারা যাঁরা শান্তি স্থাপনের জন্য কাজ করে, কারণ তারা ঈশ্বরের সন্তানরূপে পরিচিত হবে৷ 10 ঈশ্বরের পথে চলতে গিয়ে যাঁরা নির্য়াতন ভোগ করছে তারা ধন্য, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই হবে৷ 11 তোমরা আমার অনুসারী হয়েছ বলে যখন লোকে তোমাদের অপমান ও নির্য়াতন করে আর তোমাদের নামে মিথ্যা কুত্সা রটায় তখন তোমরা ধন্য৷ 12 তোমরা আনন্দ করো, খুশী হও, কারণ স্বর্গে তোমাদের জন্য মহাপুরস্কার সঞ্চিত আছে৷ তোমাদের আগে য়ে ভাববাদীরা ছিলেন লোকে তাঁদেরও এভাবেইনির্য়াতন করেছে৷ 13 ‘তোমরা পৃথিবীর লবন, কিন্তু লবন যদি তার নিজের স্বাদ হারায় তবে কেমন করে তা আবার নোন্তা করা যাবে? তখন তা আর কোন কাজে লাগে না৷ তা কেবল বাইরে ফেলে দেওযা হয় আর লোকরা তা মাড়িয়ে যায়৷ 14 ‘তোমরা জগতের আলো, পাহাড়ের ওপরে কোন শহর, যা কখনও লুকানো যায় না৷ 15 বাতি জে্বলে কেউ পাত্রের নীচে রাখে না, তা বাতিদানের ওপরেইরাখে আর তা ঘরের সকলকে আলো দেয়৷ 16 তেমনি তোমাদের আলোও লোকদের সামনে উজ্জ্বল হোক, য়েন তারা তোমাদের সত্কাজ দেখে তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করে৷ 17 ভেবো না য়ে আমি মোশির বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষা ধ্বংস করতে এসেছি৷ আমি তা ধ্বংস করতে আসিনি বরং তা পূর্ণ করতেইএসেছি৷ 18 আমি তোমাদের সত্যি বলছি আকাশ ও পৃথিবীর লোপ না হওয়া পর্যন্ত বিধি-ব্যবস্থার বিন্দু বিসর্গও লোপ হবে না, বিধি-ব্যবস্থার সবই পূর্ণ হবে৷ 19 তাই কেউ যদি এইসব আদেশের মধ্যে অতি সামান্য আদেশও অমান্য করে আর অপরকে তা করতে শিক্ষা দেয়, তবে সে স্বর্গরাজ্যে সব থেকে তুচ্ছ বলে গন্য হবে৷ কিন্তু যাঁরা বিধি-ব্যবস্থা পালন করে ও অপরকে তা পালন করতে শিক্ষা দেয়, তারা স্বর্গরাজ্যে মহান বলে গন্য হবে৷ 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের থেকে তোমাদের ধার্মিকতা যদি উন্নত মানের না হয় তবে তোমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না৷ 21 ‘তোমরা শুনেছ, আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে বলা হয়েছিল, ‘নরহত্যা করো না;আর কেউ নরহত্যা করলে তাকে বিচারালয়ে তার জবাবদিহি করতে হবে৷ 22 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যদি কেউ কোনো লোকের প্রতি ক্রুদ্ধ হয় বিচারে তাকে তার জবাবদিহি করতে হবে৷ আর কেউ যদি কোন লোককে বলে, ‘ওরে মূর্খ’ (অর্থাত্ নির্বোধ) তবে তাকে ইহুদী মহাসভার সামনে তার জবাব দিতে হবে৷ কেউ যদি কাউকে বলে ‘তুমি পাষণ্ড,’ তবে তাকে নরকের আগুনেই তার জবাব দিতে হবে৷ 23 ‘মন্দিরে যজ্ঞবেদীর সামনে নৈবেদ্য উত্সর্গ করার সময় যদি তোমার মনে পড়ে য়ে তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভাইয়ের কোন অভিযোগ আছে, 24 তবে সেই নৈবেদ্য যজ্ঞবেদীর সামনে রেখে চলে যাও, প্রথমে গিয়ে তার সঙ্গে সে বিষয়ে মিটমাট করে নাও, পরে এসে তোমার নৈবেদ্য উত্সর্গ কোরো৷ 25 ‘তোমার শত্রু যদি তোমার বিরুদ্ধে মামলা করতে চায় তবে আদালতে নিয়ে যাবার সময় পথেই তার সঙ্গে তাড়াতাড়ি মিটমাট করে ফেল; তা না হলে সে তোমাকে বিচারকের হাতে তুলে দেবে, বিচারক তোমাকে রক্ষীর হাতে দেবে আর রক্ষীরা তোমাকে কারাগারে পাঠাবে৷ 26 আমি তোমায় সত্যি বলছি, সেখান থেকে তুমি ছাড়া পাবে না, যতক্ষণ না তোমার দেনার শেষ পয়সাটা চুকিয়ে দাও৷ 27 তোমরা শুনেছ, একথা বলা হয়েছে: ‘য়ৌনপাপ করো না৷’ 28 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি কেউ যদি কোন স্ত্রীলোকের দিকে লালসাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় তবে সে মনে মনে তার সঙ্গে য়ৌন পাপ করল৷ 29 সেই রকম তোমার ডান চোখ যদি পাপ করার জন্য তোমায় প্ররোচিত করে তবে তা উপড়ে ফেলে দাও৷ সমস্ত দেহ নিয়ে নরকে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অংশ হারানো তোমার পক্ষে ভালো৷ 30 যদি তোমার ডান হাত পাপ করতে প্ররোচিত করে, তবে তা কেটে ফেলে দাও৷ তোমার সমস্ত শরীর নরকে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অঙ্গ নষ্ট হওয়া তোমার পক্ষে ভালো৷ 31 ‘আবার বলা হয়েছে, ‘কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করতে চায়, তবে তাকে ত্যাগপত্র দিতে হবে৷ 32 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, একমাত্র য়ৌনপাপের দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে, তবে সে তাকে ব্যাভিচারিণী হবার পথে নামিয়ে দেয়৷ আর য়ে কেউ সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করে সেও য়ৌনপাপ করে৷ 33 ‘তোমরা একথা ও শুনেছ, আমাদের পিতৃপুরুষদের বলা হয়েছিল, ‘তোমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে য়ে সব প্রতিশ্রুতি কর তা ভেঙ্গো না, তোমাদের কথা মতো সে সবই পূর্ণ করো৷’ 34 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা কোন শপথইকরো না৷ স্বর্গের নামে করো না, কারণ তা ঈশ্বরের সিংহাসন৷ 35 পৃথিবীর নামে শপথ করো না, কারণ পৃথিবী ঈশ্বরের পাদপীঠ৷ জেরুশালেমের নামেও শপথ করো না, কারণ তা হল মহান রাজার নগরী৷ 36 এমন কি তোমার মাথার দিব্যিও দিও না, কারণ তোমার মাথার একগাছা চুল সাদা কি কালো করার ক্ষমতা তোমার নেই ৷ 37 তোমাদের কথার ‘হ্যাঁ’ য়েন ‘হ্যাঁ’ আর ‘না’ য়েন ‘না’ হয়, এছাড়া অন্য আর যা কিছু তা মন্দের কাছ থেকে আসে৷ 38 ‘তোমরা শুনেছ, একথা বলা হয়েছে য়ে, ‘চোখের বদলে চোখ ও দাঁতের বদলে দাঁত৷’ 39 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, দুষ্ট লোকদের প্রতিরোধ করো না, বরং কেউ যদি তোমার ডান গালে চড় মারে, তবে তার দিকে অপর গালটিও বাড়িয়ে দিও৷ 40 কেউ যদি তোমার পাজামা নেবার জন্য আদালতে মামলা করতে চায়; তবে তাকে তোমার ধূতিটাও ছেড়ে দিও৷ 41 যদি কেউ তার বোঝা নিয়ে তোমাকে এক মাইল পথ য়েতে বাধ্য করে, তার সঙ্গে দু মাইল য়েও৷ 42 কেউ যদি তোমার কাছ থেকে কিছু চায়, তাকে তা দিও৷ তোমার কাছ থেকে কেউ ধার চাইলে তাকে তা দিতে অস্বীকার করো না৷ 43 ‘তোমরা তাদের বলতে শুনেছ, ‘তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসো,শত্রুকে ঘৃণা করো৷ 44 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের শত্রুদের ভালবাসো৷ যাঁরা তোমাদের প্রতি নির্য়াতন করে তাদের জন্য প্রার্থনা করো, 45 য়েন তোমরা স্বর্গের পিতার সন্তান হতে পার৷ তিনি তো ভাল মন্দ সকলের উপর সূর্য়্য়ালোক দেন, ধার্মিক অধার্মিক সকলের উপর বৃষ্টি দেন৷ 46 আমি একথা বলছি, কারণ যাঁরা তোমাদের ভালবাসে তোমরা যদি কেবল তাদেরইভালবাস, তবে তোমরা কি পুরস্কার পাবে? কর আদায়কারীরাও কি তাইকরে না? 47 তোমরা যদি কেবল তোমাদের ভাইদেরইশুভেচ্ছা জানাও, তবে অন্যদের থেকে আর বেশী কি করলে? বিধর্মীরাও তো এমন করে থাকে৷ 48 তাই তোমাদের স্বর্গের পিতা য়েমন সিদ্ধ তোমরাও তেমন সিদ্ধ হও৷
1 ‘সাবধান! লোক দেখানো ধর্ম কর্ম বা ঈশ্বরের কাজ করো না৷ তাহলে তোমাদের স্বর্গের পিতার কাছ থেকে কোন পুরস্কার পাবে না৷ 2 ‘তাই তুমি যখন কোন অভাবী মানুষকে কিছু দাও, তখন তূরী বাজিয়ে তা দিও না৷ যাঁরা ভণ্ড তারা লোকদের প্রশংসা পাবার আশায় সমাজ-গৃহে ও পথে-ঘাটে ঐভাবে তূরী বাজিয়ে দান করে৷ আমি বলছি, তাদের পুরস্কার তারা পেয়ে গেছে৷ 3 কিন্তু তুমি যখন অভাবী লোকদের কিছু দান কর, তখন তোমার ডান হাত কি করছে তা তোমার বাঁ হাতকে জানতে দিও না, 4 য়েন তোমার দান গোপনে দেওয়া হয়৷ তাহলে তোমার পিতা ঈশ্বর যিনি গোপনে সব কিছু দেখেন, তিনি তোমায় পুরস্কার দেবেন৷ 5 ‘তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন ভণ্ডদের মতো করো না, তারা লোকদের কাছে নিজেদের দেখাবার জন্য সমাজ-গৃহে ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করতে ভালবাসে৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে৷ 6 কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা কর, তখন তোমার ঘরের ভেতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে তোমার পিতা য়াঁকে দেখা যায় না, তাঁর কাছে প্রার্থনা করো৷ তাহলে তোমার পিতা যিনি গোপনে যা কিছু করা হয় দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কার দেবেন৷ 7 ‘তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন বিধর্মীদের মতো একই প্রার্থনার পুনরাবৃত্তি করো না, কারণ তারা মনে করে তাদের বাক্যবাহুল্যের গুনে তারা প্রার্থনার উত্তর পাবে৷ 8 তাইতোমরা তাদের মতো হযো না, কারণ তোমাদের চাওয়ার আগেই তোমাদের পিতা জানেন তোমাদের কি প্রযোজন আছে৷ 9 তাইতোমরা এইভাবে প্রার্থনা করো,‘হে আমাদের স্বর্গের পিতা, তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক্৷ 10 তোমার রাজত্ব আসুক৷ তোমার ইচ্ছা য়েমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক৷ 11 য়ে খাদ্য় আমাদের প্রযোজন তা আজ আমাদের দাও৷ 12 আমাদের কাছে যাঁরা অপরাধী, আমরা য়েমন তাদের ক্ষমা করেছি, তেমনি তুমিও আমাদের সব অপরাধ ক্ষমা কর৷ 13 আমাদের প্রলোভনে পড়তে দিও না, কিন্তু মন্দের হাত থেকে উদ্ধার কর৷’ 14 তোমরা যদি অন্যদের অপরাধ ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতাও তোমাদের ক্ষমা করবেন৷ 15 কিন্তু তোমরা যদি অন্যদের ক্ষমা না কর, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতা তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন না৷ 16 ‘যখন তোমরা উপবাস কর, তখন ভণ্ডদের মতো মুখ শুকনো করে রেখো না৷ তারা য়ে উপবাস করেছে তা লোকেদের দেখাবার জন্য তারা মুখ শুকনো করে ঘুরে বেড়ায়৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে৷ 17 কিন্তু তুমি যখন উপবাস করবে, তোমার মাথায় তেল দিও আর মুখ ধুযো৷ 18 য়েন অন্য লোকে জানতে না পারে য়ে তুমি উপবাস করছ৷ তাহলে তোমার পিতা ঈশ্বর, য়াঁকে তুমি চোখে দেখতে পাচ্ছ না, তিনি দেখবেন৷ তোমার পিতা ঈশ্বর যিনি গোপন বিষয়ও দেখতে পান, তিনি তোমায় পুরস্কার দেবেন৷ 19 ‘এই পৃথিবীতে তোমরা নিজেদের জন্য ধন-সম্পদ সঞ্চয় করো না৷ এখানে ঘুন ধরে ও মরচে পড়ে তা নষ্ট হয়ে যায়, আর চোরে সিঁধ কেটে তা চুরিও করতে পারে৷ 20 বরং স্বর্গে তোমার জন্য সম্পদ সঞ্চয় কর, সেখানে ঘুন ধরবে না, মরচেও পড়বে না, চোরেও চুরি করবে না৷ 21 তোমার ধন-সম্পদ য়েখানে রয়েছে, তোমার মনও সেখানে পড়ে থাকবে৷ 22 ‘চোখইদেহের প্রদীপ, তাই তোমার চোখ যদি নির্মল হয়, তোমার সারা দেহও উজ্জ্বল হবে৷ 23 কিন্তু তোমার চোখ যদি অশুচি হয়, তবে তোমার সমস্ত দেহ অন্ধকারে ছেয়ে যাবে৷ তোমার মধ্যেকার আলো যদি অন্ধকারাচ্ছন্নইহয়, তবে সে অন্ধকার নিজে কি ভীষণ৷ 24 ‘কোন মানুষ দুজন কর্তার দাসত্ব করতে পারে না৷ সে হয়তো প্রথম জনকে ঘৃণা করবে ও দ্বিতীয় জনকে ভালবাসবে অথবা প্রথম জনের প্রতি অনুগত হবে ও দ্বিতীয় জনকে তুচ্ছ করবে৷ ঈশ্বর ও ধন-সম্পত্তি এই উভয়ের দাসত্ব তোমরা করতে পারো না৷ 25 ‘তাই আমি তোমাদের বলছি, বেঁচে থাকার জন্য কি আহার করব বা কি পান করব এ নিয়ে চিন্তা করো না৷ আর কি পরব একথা ভেবে দেহের বিষয়েও চিন্তা করো না৷ খাদ্য়ের চেয়ে জীবন কি মূল্যবান নয়, অথবা পোশাকের চেয়ে দেহটা কি মূল্যবান নয়? 26 আকাশের পাখীদের দিকে একবার তাকাও, দেখ, তারা বীজ বোনে না বা ফসলও কাটে না, অথবা গোলা ঘরে নিয়ে গিয়ে তা জমাও করে না৷ তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বর তাদের আহার য়োগান৷ তোমরা কি ওদের থেকে আরও মূল্যবান নও? 27 তোমাদের মধ্যে কে ভাবনা চিন্তা করে নিজের আযু একঘন্টা বাড়াতে পারে? 28 ‘পোশাকের বিষয়েই বা কেন এত চিন্তা কর? মাঠের লিলি ফুলগুলির দিকে চেয়ে দেখ কিভাবে তারা ফুটে উঠেছে৷ তারা পরিশ্রম করে না, নিজেদের জন্য পোশাকও তৈরী করে না৷ 29 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, রাজা শলোমন তার সমস্ত জাঁকজমক সত্ত্বেও তার পোশাকে ঐ ফুলগুলির একটির মতোও নিজেকে সাজাতে পারে নি৷ 30 মাঠে য়ে ঘাস আছে আর কাল উনুনে ফেলে দেওয়া হবে, ঈশ্বর যখন তাদের এত সুন্দর করে সাজান, তখন হে অল্প বিশ্বাসী লোকেরা, তিনি কি তোমাদের আরও সুন্দর করে সাজাবেন না? 31 তোমরা এই বলে চিন্তা করো না, ‘আমরা কি খাবো?’ বা ‘কি পান করবো?’ বা ‘কি পরবো? 32 বিধর্মীরাইএসব নিয়ে চিন্তা করে৷ তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বর তো জানেন এসব জিনিসের তোমাদের প্রযোজন আছে৷ 33 তাই তোমরা প্রথমে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে ও তাঁর ইচ্ছা কি তা পূর্ণ করতে চেষ্টা কর, তাহলে তোমাদের যা কিছু প্রযোজন সে সব দেওয়া হবে৷ 34 কালকের জন্য চিন্তা করো না; কালকের চিন্তা কালকের জন্য থাক৷ প্রতিটি দিনের পক্ষে সেই দিনের কষ্টই যথেষ্ট৷
1 ‘পরের বিচার করো না, তাহলে তোমার বিচারও কেউ করবে না৷ 2 কারণ য়েভাবে তোমরা অন্যর বিচার কর, সেই ভাবে তোমাদেরও বিচার করা হবে; আর য়েভাবে তুমি মাপবে সেই ভাবে তোমার জন্যও মাপা হবে৷ 3 ‘তোমার ভাইয়ের চোখে য়ে কুটো আছে কেবল তা-ইদেখছ; কিন্তু নিজের চোখের মধ্যে য়ে তক্তা আছে তা দেখতে পাও না? 4 যখন তোমার নিজের চোখেই একটা তক্তা রয়েছে তখন কিভাবে তোমার ভাইকে বলছ, ‘এস তোমার চোখ থেকে কুটোটা বের করে দিই?’ 5 ভণ্ড! প্রথমে তোমার নিজের চোখ থেকে তক্তাটা বের করে ফেল, তাহলে তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কুটোটা বের করার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে৷ 6 ‘কোন পবিত্র বস্তু কুকুরকে দিও না আর শুযোরের সামনে তোমাদের মুক্তো ছুঁড়ো না, তাহলে সে তা পায়ের তলায় মাড়িয়ে নষ্ট করবে ও তোমার দিকে ফিরে তোমায় আক্রমণ করবে৷ 7 ‘চাইতে থাক, তোমাদের দেওয়া হবে৷ খুঁজতে থাক, পাবে৷ দরজায় ধাক্কা দিতে থাক, তোমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হবে৷ 8 কারণ য়ে চাইতে থাকে সে পায়, য়ে খুঁজতে থাকে সে খুঁজে পায়, আর য়ে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে তার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়৷ 9 তোমার ছেলে যদি তোমার কাছে রুটি চায়, তবে তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, য়ে তার সন্তানকে রুটির বদলে পাথরের টুকরো দেবে? 10 যদি সে একটা মাছ চায় তবে বাবা কি তার হাতে একটা সাপ তুলে দেবে? নিশ্চয় না৷ 11 তোমরা মন্দ হয়েও যদি তোমাদের সন্তানদের ভাল ভাল জিনিস দিতে জানো, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের কাছে যাঁরা চায়, তাদের তিনি নিশ্চয়ই উত্কৃষ্ট জিনিস দেবেন৷ 12 ‘তাই অপরের কাছ থেকে তোমরা য়ে ব্যবহার প্রত্যাশা কর, তাদের প্রতিও তেমনি ব্যবহার কর৷ এটাই হল মোশির বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষার অর্থ৷ 13 ‘সংকীর্ণ দরজা দিয়ে সেই পথে প্রবেশ করো, য়ে পথ স্বর্গের দিকে নিয়ে যায়৷ য়ে পথ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় তার দরজা প্রশস্ত, পথও চওড়া, বহু লোক সেই পথেইচলছে৷ 14 কিন্তু য়ে পথ জীবনের দিকে গেছে তার দরজা সংকীর্ণ আর পথও দুর্গম, খুব অ’ লোকইতার সন্ধান পায়৷ 15 ‘ভণ্ড ভাববাদীদের থেকে সাবধান৷ তারা তোমাদের কাছে নিরীহ মেষের ছদ্মবেশে আসে অথচ ভেতরে তারা হিংস্র নেকড়ে বাঘ৷ 16 তাদের জীবনের ফল দেখেই তোমরা তাদের চিনতে পারবে৷ কেউ কি কাঁটাঝোপের মধ্যে থেকে দ্রাক্ষা বা শিয়ালকাঁটার ভেতর থেকেডুমুর পেতে পারে? 17 ঠিক সেই ভাবে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফলই ধরে, কিন্তু খারাপ গাছে খারাপ ফলইধরে৷ 18 ভাল গাছে খারাপ ফল এবং খারাপ গাছে ভাল ফল ধরতে পারে না৷ 19 য়ে গাছে ভাল ফল ধরে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হয়৷ 20 তাই আমি তোমাদের আবার বলছি, তারা যা করে তা দেখেইতোমরা তাদের চিনতে পারবে৷ 21 ‘যাঁরা আমাকে ‘প্রভু, প্রভু’ বলে তাদের প্রত্যেকেইয়ে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে তা নয়৷ আমার স্বর্গের পিতার ইচ্ছা য়ে পালন করবে, কেবল সেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে৷ 22 সেই দিন অনেকে আমায় বলবে, ‘প্রভু, প্রভু আমরা কি আপনার নামে ভাববাণী বলিনি? আপনার নামে আমরা কি ভূতদের তাড়াই নি? আপনার নামে আমরা কি অনেক অলৌকিক কাজ করিনি?’ 23 তখন আমি তাদের স্পষ্ট বলব, ‘আমি তোমাদের কখনও আপন বলে জানিনি, দুষ্টের দল! আমার সামনে থেকে দূর হও৷’ 24 ‘তাইবলি, য়ে কেউ আমার কথা শোনে ও তা পালন করে, সে এমন এক বুদ্ধিমান লোকের মতো য়ে পাথরের ভিতের ওপর তার বাড়ি তৈরী করল৷ 25 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এল এবং প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাস বয়ে সেই বাড়ির গায়ে লাগল; কিন্তু সেই বাড়িটা ধসে পড়ল না, কারণ তা পাথরের ওপরে তৈরী করা হয়েছিল৷ 26 আবার য়ে কেউ আমার এই সব কথা শুনে তা পালন না করে, সে একজন মূর্খ লোকের মতো, য়ে বালির উপরে বাড়ি তৈরী করেছিল৷ 27 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, আর ঝোড়ো বাতাস এসে তার বাড়িতে ধাক্কা মারল, তাতে বাড়িটা কি সাংঘাতিক ভাবেই না ধসে পড়ল৷’ 28 যীশু যখন এই সব কথা বলা শেষ করলেন, তখন জনতা তাঁর এই সব শিক্ষা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে গেল৷ 29 কারণ যীশু একজন ব্যবস্থার শিক্ষকের মতো শিক্ষা দিচ্ছিলেন না, বরং যার অধিকার আছে সেইরকম লোকের মতোইশিক্ষা দিচ্ছিলেন৷
1 যীশু সেই পাহাড় থেকে নেমে এলে অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল৷ 2 সেই সময় একজন কুষ্ঠ রোগী যীশুর কাছে এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে বলল, ‘প্রভু, আপনি ইচ্ছে করলেই আমাকে ভাল করে দিতে পারেন৷’ 3 তখন যীশু সেইকুষ্ঠ রোগীর দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করলেন৷ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি তাই-ইচাই৷ তুমি ভাল হয়ে যাও৷’ সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ রোগ ভাল হয়ে গেল৷ 4 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘দেখ, তুমি কাউকে একথা বোলো না, বরং যাও যাজকের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও; আর গিয়ে মোশির আদেশ অনুসারে নৈবেদ্য উত্সর্গ কর৷ তাতে তারা জানবে য়ে তুমি ভাল হয়ে গেছ৷’ 5 এরপর যীশু যখন কফরনাহূম শহরে গেলেন, তখন একজন শতপতি তাঁর কাছে এসে অনুনয় করে বললেন, 6 ‘প্রভু, আমার চাকরের পক্ষাঘাত হয়েছে, সে বিছানায় পড়ে আছে ও যন্ত্রণায় ছট্ফট্ করছে৷’ 7 যীশু তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি যাব, এবং তাকে সুস্থ করব৷’ 8 সেইশতপতি তখন যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আমি এমন য়োগ্য নইয়ে আমার বাড়ীতে আপনি আসবেন৷ আপনি কেবল মুখে বলে দিন, তাতেইআমার চাকর ভাল হয়ে যাবে৷ 9 আমি নিজে অপরের কর্তৃত্বের অধীন আর আমার সৈন্যদের উপরে আমি কর্তৃত্ব করি৷ আমি কাউকে ‘যাও’ বললে সে যায়, আবার কাউকে ‘এস’ বললে সে আসে; আর আমার চাকরকে ‘এটা কর’ বললে সে তা করে৷’ 10 যীশু একথা শুনে আশ্চর্য হলেন; যাঁরা তাঁর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি সমগ্র ইস্রায়েলে আমি এত বেশী বিশ্বাস কারও মধ্যে দেখতে পাইনি৷ 11 আমি তোমাদের আরো বলছি য়ে, পূর্ব ও পশ্চিম থেকে অনেকে আসবে আর অব্রাহাম, ইসহাক ও যাকোবের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যে ভোজে বসবে৷ 12 কিন্তু যাঁরা রাজ্যের উত্তরাধিকারী, তাদের বাইরে অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হবে৷ সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করবে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষবে৷’ 13 এরপর যীশু সেই শতপতিকে বললেন, ‘যাও, তুমি য়েমন বিশ্বাস করেছ, তেমনি হোক্৷’ আর সেই মূহুর্তেই তার চাকর সুস্থ হয়ে গেল৷ 14 যীশু পিতরের বাড়ীতে গিয়ে দেখলেন, পিতরের শাশুড়ীর ভীষণ জ্বর হয়েছে, আর তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন৷ 15 যীশু তাঁর হাত স্পর্শ করা মাত্রই জ্বর ছেড়ে গেল৷ তখন তিনি বিছানা ছেড়ে উঠে যীশুর সেবা করতে লাগলেন৷ 16 সন্ধ্যা হলে লোকেরা ভূতে পাওয়া অনেক লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ আর তিনি তাঁর হুকুমে সেই সব ভূতদের দূর করে দিলেন৷ এছাড়া তিনি রোগীদের সুস্থ করলেন৷ 17 এর দ্বারা ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:‘তিনি আমাদের দুর্বলতা গ্রহণ করলেন, আমাদের ব্যাধিগুলি বহন করলেন৷’ যিশাইয় 53:4 18 যীশু যখন দেখলেন য়ে তাঁর চারপাশে অনেক লোক জড়ো হয়েছে, তখনহ্রদের ওপারে যাওয়ার জন্য অনুগামীদের আদেশ দিলেন৷ 19 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘গুরু, আপনি য়েখানে যাবেন আমিও সেখানে যাব৷’ 20 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘শিয়ালের গর্ত আছে এবং আকাশের পাখীদের বাসা আছে; কিন্তু মানবপুত্রের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই৷’ 21 তাঁর অনুগামীদের মধ্যে আর একজন বললেন, ‘প্রভু আগে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসার অনুমতি দিন, তারপর আমি আপনাকে অনুসরণ করব৷’ 22 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে এস, যাঁরা মৃত তারাই মৃতদের কবর দেবে৷’ 23 এরপর যীশু একটা নৌকাতে উঠলেন আর তার শিষ্যরা তাঁর সঙ্গে গেলেন৷ 24 সেইহ্রদের মধ্যে হঠাত্ ভীষণ ঝড় উঠল, তাতে নৌকার উপর ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল৷ যীশু তখন ঘুমোচ্ছিলেন৷ 25 তাইশিষ্যরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর ঘুম ভাঙ্গিয়ে বললেন, ‘প্রভু বাঁচান! আমরা য়ে ডুবে মরলাম৷’ 26 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘হে অল্প বিশ্বাসীর দল! কেন তোমরা এত ভয় পাচ্ছ?’ তারপর তিনি উঠে ঝোড়ো বাতাস ওহ্রদের ঢেউকে ধমক দিলেন, তখন সব কিছু শান্ত হল৷ 27 এতে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘ইনি কিরকম লোক? এঁর কথা এমন কি বাতাস ও সাগর শোনে!’ 28 যীশু যখনহ্রদের অপর পারে গাদারীয়দের দেশে এলেন সেই সময় ভূতে পাওয়া দুজন লোক কবর থেকে বেরিয়ে তাঁর সামনে এল৷ তারা এমন ভয়ঙ্কর ছিল য়ে কোন মানুষ সেই পথ দিয়ে চলতে পারত না৷ 29 ‘তারা চিত্কার করে বলল, ‘হে ঈশ্বরের পুত্র, আপনি আমাদের নিয়ে কি করতে চান? নির্দিষ্ট সময়ের আগেইকি আপনি আমাদের নির্য়াতন করতে এসেছেন?’ 30 সেখান থেকে কিছু দূরে এক পাল শুযোর চরছিল৷ 31 তখন ভূতেরা যীশুকে অনুনয় করে বলল, ‘আপনি যদি আমাদের তাড়িয়েইদেবেন তবে ঐ শুযোর পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন৷’ 32 যীশু তাদের বললেন, ‘তাইযাও!’ তখন তারা সেইলোকদের মধ্যে থেকে বের হয়ে এসে সেইশুযোরগুলির মধ্যে গিয়ে ঢুকল; তাতে সেইশুযোরের পাল ঢালু পাড় দিয়ে জোরে দৌড়াতে দৌড়াতে ব্রদের জলে গিয়ে ডূবে মরল৷ 33 যাঁরা সেইপাল চরাচ্ছিল, তারা দৌড়ে পালাল৷ তারা নগরের মধ্যে গিয়ে সব খবর জানাল৷ বিশেষ করে সেইভূতে পাওয়া লোকদের বিষয়ে বলল৷ 34 তখন নগরের সব লোক যীশুকে দেখার জন্য বের হয়ে এল৷ তারা যীশুর দেখা পেয়ে তাঁকে অনুনয় করে বলল তিনি য়েন তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে যান৷
1 এরপর যীশু নৌকায় উঠেহ্রদের অপর পারে নিজের শহরে এলেন৷ 2 কয়েকজন লোক তখন খাটিয়ায় শুয়ে থাকা এক পঙ্গুকে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ তাদের এমন বিশ্বাস দেখে তিনি সেই পঙ্গুকে বললেন, ‘বাছা, সাহস সঞ্চয় কর, তোমার সব পাপের ক্ষমা হল৷’ 3 তখন কয়েকজন ব্যবস্থার শিক্ষক বলতে লাগলেন, ‘এইলোকটা দেখছি এধরণের কথা বলে ঈশ্বরের নিন্দা করছে৷’ 4 তারা কি চিন্তা করছে, তা জানতে পেরে যীশু বললেন, ‘তোমরা মনে মনে কেন এমন মন্দ চিন্তা করছ? 5 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল’ না, ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও? 6 কিন্তু আমি তোমাদের দেখাব য়ে এইপৃথিবীতে মানবপুত্রের পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা আছে৷’ এই বলে যীশু সেই পঙ্গু লোকটির দিকে ফিরে বললেন, ‘ওঠ, তোমার খাটিয়া নিয়ে বাড়ি চলে যাও৷’ 7 তখন সেই পঙ্গু লোকটি উঠে তার বাড়ি চলে গেল৷ 8 লোকেরা এই ঘটনা দেখে ভয় পেয়ে গেল; আর ঈশ্বর মানুষকে এমন ক্ষমতা দিয়েছেন বলে তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ 9 যীশু সেখান থেকে চলে যাবার সময় দেখলেন একজন লোক কর আদায়ের গদিতে বসে আছে৷ তাঁর নাম মথি৷ যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমার সঙ্গে এস৷’ মথি তখনইউঠে তাঁর সঙ্গে গেলেন৷ 10 পরে মথির বাড়িতে যীশু খেতে বসলে সেখানে অনেক কর আদায়কারী ও পাপী-তাপী মানুষ এসে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল৷ 11 ফরীশীরা তা দেখে যীশুর অনুগামীদের বললেন, ‘তোমাদের গুরু কর আদায়কারী ও পাপী-তাপীর সঙ্গে কেন খাওয়া-দাওয়া করেন?’ 12 একথা শুনে যীশু বললেন, ‘যাঁরা সুস্থ আছে তাদের জন্য ডাক্তারের প্রযোজন নেই, বরং রোগীদেরই ডাক্তারের প্রযোজন৷’ 13 বলিদান নয়, আমি চাইতোমরা দয়া করতে শেখ,’শাস্ত্রের এইকথার অর্থ কি তা বুঝে দেখ৷ কারণ সত্ ও ধার্মিক লোকদের নয়, পাপীদেরই আমি ডাকতে এসেছি৷’ 14 পরে য়োহনের অনুগামীরা যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমরা ও ফরীশীরা প্রায়ই উপোস করি; কিন্তু আপনার শিষ্যরা কেন উপোস করে না?’ 15 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘বর সঙ্গে থাকতে কি বরের বন্ধুরা শোক করতে পারে? কিন্তু দিন আসছে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন তারা উপোস করবে৷ 16 ‘নতুন কাপড়ের টুকরো নিয়ে কেউ পুরানো কাপড়ে তালি দেয় না, তাহলে ছেঁড়াটা আরো বিশ্রী হবে৷ 17 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ নতুন দ্রাক্ষা রস রাখে না, রাখলে চামড়ার থলিটি ফেটে যায়, ফলে দ্রাক্ষারস পড়ে যায় আর থলিটিও নষ্ট হয়৷ টাটকা রস নতুন থলিতেই রাখতে হয়, তাতে দুটোই সুরক্ষিত থাকে৷’ 18 যীশু যখন তাদের এসব কথা বলছিলেন, সেই সময় সমাজ-গৃহের নেতাদের একজন তাঁর কাছে এসে নতজানু হয়ে বললেন, ‘আমার মেয়েটা এই মাত্র মারা গেল, আপনি এসে তাকে একটু স্পর্শ করুন তাহলে সে বেঁচে উঠবে৷’ 19 তখন যীশু উঠে তাঁর সঙ্গে গেলেন, আর তাঁর শিষ্যরাও তাঁর সঙ্গে চললেন৷ 20 পথে যাবার সময় একজন স্ত্রীলোক যীশুর পিছন দিকে এসে তাঁর পোশাকের খুঁট স্পর্শ করল, সে বারো বছর ধরে রক্তস্রাবে কষ্ট পাচ্ছিল৷ 21 সে মনে মনে ভাবল, ‘আমি যদি যীশুর পোশাক কেবল ছুঁতে পারি, তাহলেই ভাল হয়ে যাব৷’ 22 যীশু ঘুরে দাঁড়ালেন আর তাকে দেখতে পেয়ে বললেন, ‘বাছা, তুমি মনে সাহস রাখো, তোমার বিশ্বাসই তোমায় সুস্থ করল৷’ তখন থেকে স্ত্রীলোকটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল৷ 23 যীশু সেইনেতার বাড়িতে পরে গিয়ে দেখলেন, যাঁরা করুণ সুরে বাঁশি বাজায় তারা রয়েছে আর লোকরা হৈ হৈ করছে৷ 24 যীশু বললেন, ‘তোমরা বাইরে যাও৷ মেয়েটি মরে নি, ও তো ঘুমিয়ে আছে৷’ লোকগুলো এইকথা শুনে তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগল৷ 25 লোকদের ঘর থেকে বের করে দেওয়া হলে, যীশু ভেতরে গিয়ে মেয়েটির হাত ধরলেন, তাতে সে উঠে বসল৷ 26 এই ঘটনার কথা সেইঅঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল৷ 27 যীশু যখন সেই জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তখন দুজন অন্ধ তাঁর পিছনে পিছনে চলল৷ তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘হে দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন৷’ 28 যীশু বাড়িতে এলে সেই দুজন অন্ধ তাঁর কাছে এল৷ তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কি বিশ্বাস কর য়ে আমি তোমাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারি?’অন্ধ লোক দুটি বলল, ‘হ্যাঁ, প্রভু আমরা বিশ্বাস করি৷’ 29 তখন তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করে বললেন, ‘তোমরা য়েমন বিশ্বাস করেছ, তোমাদের প্রতি তেমনি হোক্৷’ 30 আর তখনই তারা চোখে দেখতে পেল৷ যীশু তাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে বললেন, ‘দেখ, একথা কেউ য়েন জানতে না পারে৷’ 31 কিন্তু তারা সেখান থেকে গিয়ে যীশুর বিষয়ে সেইঅঞ্চলের সব জায়গায় বলতে লাগল৷ 32 ঐ দুজন লোক যখন চলে যাচ্ছে, এমন সময় কয়েকজন লোক ভূতে পাওয়া একজন লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল, সে কথা বলতে পারত না৷ 33 সেই ভূতকে তার ভেতর থেকে তাড়িয়ে দেবার পর বোবা লোকটি কথা বলতে লাগল৷ তাতে সমবেত সব লোক আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তারা বলল, ‘ইস্রায়েলে এমন কখনও দেখা যায় নি৷’ 34 কিন্তু ফরীশীরা বলতে থাকল, ‘সে ভূতদের শাসনকর্তার শক্তিতে তাদের তাড়ায়৷’ 35 যীশু সেই অঞ্চলের সমস্ত নগর ও গ্রামে গ্রামে ঘুরে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে এবং স্বর্গরাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন৷ তাছাড়া তিনি লোকেদের সমস্ত রোগ ব্যাধি ভাল করতে লাগলেন৷ 36 লোকদের ভীড় দেখে তাদের জন্য যীশুর মমতা হল, কারণ তারা পালকবিহীন মেষপালের মতো ক্লান্ত ও অসহায় ছিল৷ 37 তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘ফসল প্রচুর কিন্তু কাটার লোক কত অল্প, 38 তাইতোমরা ফসলের মালিকের কাছে অনুরোধ কর, য়েন তিনি ফসল কাটার জন্য মজুর পাঠান৷’
1 যীশু তাঁর বারো জন শিষ্যকে কাছে ডেকে তাঁদের অশুচিআত্মা তাড়িয়ে দেবার ও সব রোগ ব্যধি সারাবার ক্ষমতা দিলেন৷ 2 সেই বারো জন প্রেরিতের নাম - প্রথম হলেন শিমোন যাকে পিতর বলা হয়, তারপর তার ভাই আন্দরিয়, সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও তার ভাই য়োহন, 3 ফিলিপ ও বর্থলময়, থোমা ও কর আদায়কারী মথি, আলফেয়ের ছেলে যাকোব ও থদ্দেয়, 4 দেশভক্তশিমোন ও যীশুকে য়ে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল সেই যিহূদা ঈষ্করিযোতীয়৷ 5 এই বারো জনকে যীশু এই নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, ‘তোমরা অইহুদীদের অঞ্চলে বা শমরীয়দের কোন নগরে য়েও না, 6 বরং ইস্রায়েল জাতির হারানো মেষদের কাছে য়েও৷ 7 তাদের কাছে গিয়ে প্রচার কর য়ে, ‘স্বর্গরাজ্য এসে পড়েছে৷’ 8 তোমরা গিয়ে রোগীদের সারিয়ে তোল, মৃতদের বাঁচিয়ে তোল, কুষ্ঠ রোগীদের পরিষ্কার করো, ভূতদের বের করে দাও৷ তোমরা এসব কাজ বিনামূল্যে করো, কারণ তোমরা সেই ক্ষমতা বিনামূল্যেই পেয়েছ৷ 9 তোমাদের কোমরের কাপড়ে বেঁধে তোমরা সোনা, রূপো বা টাকা পয়সা সঙ্গে নিও না৷ 10 পথ চলতে কোন থলি বা বাড়তি জামাকাপড় কিংবা জুতো নিও না, এমন কি লাঠিও না, কারণ আমি বলছি শ্রমিক তার পারিশ্রমিক পাবার য়োগ্য৷ 11 ‘তোমরা যখন কোন শহর বা গ্রামে যাবে, সেখানে এমন কোন উপযুক্ত লোক খুঁজে বের করো যার উপর আস্থা রাখতে পার এবং কোথাও চলে না যাওয়া পর্যন্ত তার বাড়িতেই থেকো৷ 12 যখন তোমরা সেই বাড়িতে গিয়ে উঠবে তখন সেখানকার লোকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলো, ‘তোমাদের শান্তি হোক্৷’ 13 সেই বাড়ির লোকরা যদি তোমাদের স্বাগত জানায়, তবে তারা সেই শান্তি লাভের উপযুক্ত৷ কিন্তু তারা যদি তোমাদের স্বাগত না জানায়, তবে তোমাদের শান্তি তোমাদেরই কাছে ফিরে আসুক৷ 14 কেউ যদি তোমাদের গ্রহণ না করে বা তোমাদের কথা শুনতে না চায়, তবে সেই বাড়ি বা সেইশহর ছেড়ে চলে য়েও৷ যাবার সময় সেখানকার পায়ের ধূলো ঝেড়ে ফেলো৷ 15 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মহাবিচারের দিনে সদোম ও ঘমোরারলোকদের থেকে সেইশহরের অবস্থা ভয়ঙ্কর হবে৷ 16 ‘সাবধান! দেখ, আমি নেকড়ের পালের মধ্যে মেষের মতো তোমাদের পাঠাচ্ছি৷ তাইতোমরা সাপের মতো চতুর ও পায়রার মতো অমাযিক হযো৷ 17 কিন্তু লোকদের থেকে সাবধান থেকো, কারণ তারা তোমাদের গ্রেপ্তার করে সমাজগৃহের মহাসভার হাতে তুলে দেবে৷ আর তারা সমাজ-গৃহে নিয়ে গিয়ে তোমাদের বেত মারবে৷ 18 আমার অনুসারী হওয়ার জন্য শাসকদের সামনে ও রাজাদের দরবারে তোমাদের হাজির করা হবে৷ তোমরা এইভাবে তাদের কাছে ও অইহুদীদের কাছে আমার বিষয়ে বলার সুয়োগ পাবে৷ 19 তারা যখন তোমাদের ধরে নিয়ে যাবে, তখন কিভাবে বলবে এবং কি বলবে সে নিয়ে চিন্তা করো না, কারণ কি বলতে হবে ঠিক সময়ে তা তোমাদের মুখে যুগিয়ে দেওয়া হবে৷ 20 মনে রেখো, তোমরা য়ে বলবে, তা নয়, কিন্তু তোমাদের ভেতর দিয়ে তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের আত্মাই কথা বলবেন৷ 21 ‘ভাই ভাইকে এবং বাবা ছেলেকে মৃত্যুদণ্ডের জন্য ধরিয়ে দেবে৷ ছেলেমেয়েরা বাবা-মার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে৷ 22 আমার নামের জন্য সকলে তোমাদের ঘৃণা করবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত য়ে স্থির থাকবে সেইরক্ষা পাবে৷ 23 যখন তারা এক শহরে তোমাদের ওপর নির্য়াতন করবে, তখন তোমরা অন্য শহরে পালিয়ে য়েও৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মানবপুত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত তোমরা ইস্রায়েলের সমস্ত শহরে তোমাদের কাজ শেষ করতে পারবে না৷ 24 ‘ছাত্র তার গুরু থেকে বড় নয়, আর ক্রীতদাসও তার মনিব থেকে বড় নয়৷ 25 ছাত্র যদি গুরুর মতো হয়ে উঠতে পারে, আর ক্রীতদাস যদি তার মনিবের মতো হয়ে উঠতে পারে তাহলেই যথেষ্ট৷ বাড়ির কর্তাকে তারা যদি বেল্সবুল বলে, তবে বাড়ির অন্যদের তারা আরও কত কি বলবে৷’ 26 ‘তাই তাদের ভয় করো না, কারণ গুপ্ত সব বিষয়ই প্রকাশ পাবে, গোপন সব বিষয়ইপ্রকাশ করা হবে৷ 27 অন্ধকারের মধ্যে আমি যা বলছি, আমি চাই তা তোমরা দিনের আলোতে বল৷ আর আমি তোমাদের কানে যা বলছি, আমি চাইতা তোমরা ছাদের উপর থেকে চিত্কার করে বল৷ 28 যাঁরা কেবল তোমাদের দৈহিকভাবে হত্যা করতে পারে তাদের ভয় করো না, কারণ তারা তোমাদের আত্মাকে ধ্বংস করতে পারে না৷ কিন্তু যিনি দেহ ও আত্মা উভয়ই নরকে ধ্বংস করতে পারেন বরং তাঁকেইভয় কর৷ 29 দুটো চড়াই পাখি কি মাত্র কয়েক পয়সায় বিক্রি হয় না? তবু তোমাদের পিতার অনুমতি ছাড়া তাদের একটাও মাটিতে পড়ে না৷ 30 হ্যাঁ, এমন কি তোমাদের মাথার সব চুলও গোনা আছে৷ 31 কাজেইতোমরা ভয় পেও না৷ অনেকগুলি চড়াই পাখির থেকেও তোমাদের মূল্য ঢ়েব বেশী৷ 32 ‘য়ে কেউ মানুষের সামনে আমাকে স্বীকার করে, আমিও আমার স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের সামনে তাকে স্বীকার করব৷ 33 কিন্তু য়ে কেউ মানুষের সামনে আমাকে অস্বীকার করবে, আমিও আমার স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের সামনে তাকে অস্বীকার করব৷ 34 ‘একথা ভেবো না য়ে আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি৷ আমি শান্তি দিতে আসি নি কিন্তু খড়গ দিতে এসেছি৷ 35 - 36 আমি এই ঘটনা ঘটাতে এসেছি:‘আমি ছেলেকে বাবার বিরুদ্ধে, মেয়েকে মায়ের বিরুদ্ধে, বৌমাকে শাশুড়ীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে এসেছি৷ নিজের আত্মীয়েরাই হবে একজন ব্যক্তির সবচেয়ে বড় শত্রু৷’ মীখা 7:6 37 ‘য়ে কেউ আমার চেয়ে তার বাবা-মাকে বেশী ভালবাসে সে আমার আপনজন হবার য়োগ্য নয়৷ আর য়ে কেউ তার ছেলে বা মেয়েকে আমার চেয়ে বেশী ভালবাসে, সে আমার আপনজন হবার য়োগ্য নয়৷ 38 য়ে নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার পথে না চলে, সেও আমার শিষ্য হবার য়োগ্য নয়৷ 39 য়ে কেউ নিজের জীবন লাভ করতে চায়, সে তা হারাবে; কিন্তু য়ে আমার জন্য তার জীবন উত্সর্গ করে, সে তা লাভ করবে৷ 40 য়ে তোমাদের সাদরে গ্রহণ করে, সে আমাকেইগ্রহণ করে৷ আর য়ে আমাকে গ্রহণ করে, সে তো যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন সেইঈশ্বরকেই গ্রহণ করে৷ 41 কেউ যদি কোন ভাববাদীকে একজন ভাববাদী বলেই সাদরে গ্রহণ করে, তবে ভাববাদীর য়ে পুরস্কার সেও তা লাভ করবে৷ আর কেউ যদি কোন ধার্মিক লোককে ধার্মিক বলে সাদরে গ্রহণ করে, তবে ধার্মিক ব্যক্তির প্রাপ্য় য়ে পুরস্কার সেও তা পাবে৷ 42 এই সামান্য লোকদের মধ্যে কাউকে যদি আমার অনুগামী বলে কেউ এক ঘটি ঠাণ্ডা জল দেয়, আমি সত্যি বলছি, সেও তার পুরস্কার পাবে৷’
1 যীশু তাঁর বারোজন শিষ্যকে এই ভাবে নির্দেশদেওয়া শেষ করলেন৷ এরপর তিনি গালীল শহরে শিক্ষা দেবার ও প্রচার করার জন্য সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 2 য়োহন (বাপ্তাইজ) কারাগার থেকে খ্রীষ্টের কাজের কথা শুনলেন৷ তখন তিনি তাঁর অনুগামীদের যীশুর কাছে পাঠালেন৷ 3 অনুগামীরা যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘যার আগমনের কথা ছিল, আপনি কি সেই লোক, না আমরা আর কারও জন্য অপেক্ষা করব?’ 4 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা যা শুনছ ও দেখছ, য়োহনকে গিয়ে তা বল 5 অন্ধেরা দৃষ্টিশক্তি পাচ্ছে, খোঁড়ারা হাঁটছে, কুষ্ঠরোগীরা আরোগ্য লাভ করছে, কালারা শুনতে পাচ্ছে, মরা মানুষ বেঁচে উঠছে, আর দরিদ্র লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করা হচ্ছে৷ 6 ধন্য সেইলোক, আমাকে গ্রহণ করতে যার কোন বাধা নেই৷’ 7 য়োহনের অনুগামীরা যখন চলে যাচ্ছেন, তখন লোকদের উদ্দেশ্য করে যীশু য়োহনের বিষয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘তোমরা মরুপ্রান্তরে কি দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে দোলায়মান বেত গাছ? 8 না, তা নয়৷ তাহলে কি দেখতে গিয়েছিলে? জমকালো পোশাক পরা কোন লোককে? শোন! যাঁরা জমকালো পোশাক পরে তাদের রাজপ্রাসাদে দেখতে পাবে৷ 9 তাহলে তোমরা কি দেখবার জন্য গিয়েছিলে? একজন ভাববাদীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, যাকে তোমরা দেখেছ তিনি ভাববাদীর চেয়েও মহান! 10 তিনি সেইলোক যার বিষয়ে শাস্ত্রে লেখা আছে,‘শোন! আমি তোমার আগে আগে আমার এক দূতকে পাঠাচ্ছি৷ সে তোমার জন্য পথ প্রস্তুত করবে৷’মালাখি 3:1 11 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভে যত মানুষের জন্ম হয়েছে তাদের মধ্যে বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের চেয়ে কেউই মহান নয়, তবু স্বর্গরাজ্যের কোন ক্ষুদ্রতম ব্যক্তিও য়োহনের থেকে মহান৷ 12 বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের সময় থেকে আজ পর্যন্ত স্বর্গরাজ্য ভীষণভাবে আক্রান্ত হচ্ছে৷ আর শক্তিধর লোকরা তা জোরের সাথে অধিকার করতে চেষ্টা করছে৷ 13 য়োহনের আগমণের পূর্ব পর্যন্ত যা ঘটবে সকল ভাববাদী ও মোশির বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে তা বলা হয়েছে৷ 14 তোমরা যদি একথা বিশ্বাস করতে রাজী থাক তবে শোন, এই য়োহনই সেই ভাববাদী এলীয়,য়াঁর আসবার কথা ছিল৷ 15 যার শোনবার মতো কান আছে সে শুনুক৷ 16 ‘আমি কিসের সঙ্গে এই যুগের লোকদের তুলনা করব? এরা এমন একদল ছোট ছেলেমেয়েদের মতো যাঁরা হাটে বসে অন্য ছেলেমেয়েদের ডেকে বলে, 17 ‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম, তোমরা নাচলে না৷ আমরা শোকের গান গাইলাম, কিন্তু তোমরা বিলাপ করলে না৷’ 18 য়োহন অন্য লোকদের মতো না করলেন আহার, না করলেন পান, আর লোকরা বলে, ‘ওকে ভূতে পেয়েছে৷’ 19 এরপর মানবপুত্র এসে অন্য লোকদের মতো পান ও আহার করলেন বলে লোকে বলছে, ‘ঐ দেখ! একজন পেটুক ও মদখোর, কর আদায়কারী ও পাপীদের বন্ধু৷’ কিন্তু প্রজ্ঞা তার কাজের দ্বারাইসত্য বলে প্রমাণিত হবে৷’ 20 ‘য়ে সমস্ত শহরে যীশু বেশীর ভাগ অলৌকিক কাজ করেছিলেন, তাদের তিনি ভর্ত্সনা করলেন, কারণ তারা তাদের মন ফেরায় নি৷ তিনি তাদের বললেন, 21 ‘ধিক্ কোরাসীন! ধিক বৈত্সৈদা!তোমাদের কি ভয়ঙ্কর দুর্দশাই না হবে! আমি তোমাদের একথা বলছি কারণ, তোমাদের মধ্যে য়ে সব অলৌকিক কাজ আমি করেছি তা যদি সোর ও সীদোনে করা হত, তবে সেখানকার লোকেরা অনেক আগেই তাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে চটের বস্ত্র পরে ছাই মেখে মন-ফিরাতো৷ 22 তাই আমি তোমাদের বলছি, বিচারের দিনে তোমাদের থেকে সোর ও সীদোনেরঅবস্থা সহ্য করবার মতো হবে৷ 23 আর য়ে কফরনাহূম তুমি নাকি স্বর্গীয় মহিমায় মণ্ডিত হবে? না! তোমাকে পাতালে নামিয়ে আনা হবে৷ য়ে সমস্ত অলৌকিক কাজ তোমার মধ্যে করা হয়েছে তা যদি সদোমে করা হত তবে সদোম আজও টিকে থাকত৷ 24 আমি তোমাদের বলছি, বিচারের দিনে তোমাদের চেয়ে বরং সদোম দেশের দশা অনেক সহনীয় হবে৷ 25 এই সময় যীশু বললেন, ‘স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, আমার পিতা, আমি তোমার প্রশংসা করি, কারণ জগতের জ্ঞানী ও পণ্ডিতদের কাছে এসব তত্ত্ব তুমি গোপন রেখে শিশুর মতো সরল লোকদের কাছে তা প্রকাশ করেছ৷ 26 হ্যাঁ, পিতা এই ভাবেইতো তুমি এটা করতে চেয়েছিলে৷ 27 ‘আমার পিতা সব কিছুই আমার হাতে সঁপে দিয়েছেন৷ পিতা ছাড়া পুত্রকে কেউ জানে না; আর পুত্র ছাড়া পিতাকে কেউ জানে না৷ পুত্র যার কাছে পিতাকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন সে-ইতাঁকে জানে৷ 28 ‘তোমরা যাঁরা শ্রান্ত-ক্লান্ত ও ভারাক্রান্ত মানুষ, তারা আমার কাছে এস, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব৷ 29 আমার জোয়াল তোমাদের কাঁধে তুলে নাও, আর আমার কাছ থেকে শেখ, কারণ আমি বিনযী ও নম্র, তাতে তোমাদের প্রাণ বিশ্রাম পাবে৷ 30 কারণ আমার দেওয়া জোয়াল বয়ে নেওয়া সহজ ও আমার দেওয়া ভার হাল্কা৷’
1 সেই সময় একদিন যীশু এক বিশ্রামবারে শস্য ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন৷ শিষ্যদের খিদে পাওয়ায় তারা গমের শীষ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগলেন৷ 2 কিন্তু ফরীশীরা তা দেখে যীশুকে বললেন, ‘দেখ! বিশ্রামবারে যা করা নিয়ম বিরুদ্ধ, তোমার শিষ্যরা তাই করছে৷’ 3 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের যখন খিদে পেয়েছিল তখন তিনি কি করেছিলেন তা কি তোমরা পড় নি? 4 তিনি তো ঈশ্বরের মন্দিরে ঢুকে সেই পবিত্র রুটি খেয়েছিলেন৷ দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের অবশ্যই তা খাওয়া ন্যায়সঙ্গত ছিল না, কেবল যাজকরাই তা খেতে পারতেন৷ 5 এছাড়া তোমরা কি মোশির বিধি-ব্যবস্থা পড়নি য়ে বিশ্রামবারে মন্দিরের মধ্যে য়ে যাজকরা কাজ করেন তাঁরাও বিশ্রামবারের বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করেন; আর তার জন্য তাদের কোন দোষ হয় না? 6 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, মন্দির থেকেও মহান কিছু এখানে আছে৷ 7 ‘বলিদান ও নৈবেদ্য থেকে আমি দয়াইচাই৷’শাস্ত্রের এইবাণীর অর্থ কি তা যদি তোমরা জানতে, তবে যাঁরা দোষী নয় তাদের তোমরা দোষী করতে না৷ 8 ‘কারণ মানবপুত্র বিশ্রামবারেরও প্রভু৷’ 9 এরপর যীশু সেখান থেকে তাদের সমাজ-গৃহে গেলেন৷ 10 সেখানে একজন লোক ছিল, যার একটা হাত শুকিয়ে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল৷ যীশুকে দোষী করবার উদ্দেশ্য নিয়ে লোকরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে বিশ্রামবারে কি রোগীকে সুস্থ করা উচিত?’ 11 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘ধর তোমাদের মধ্যে কারও একটা ভেড়া আছে, সেই ভেড়াটা যদি বিশ্রামবারে গর্তে পড়ে যায়, তবে তুমি কি তাকে ধরে তুলবে না? 12 আর ভেড়ার চেয়ে মানুষের মূল্য অনেক বেশী৷ তাই মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে বিশ্রামবারে ভাল কাজ করা ন্যায়সঙ্গত৷’ 13 তারপর যীশু সেই লোকটিকে বললেন, ‘তোমার হাতটা বাড়িয়ে দাও৷’ সে তার হাতটা বাড়িয়ে দিলে পর সেটা ভাল হয়ে অন্য হাতটার মতো হয়ে গেল৷ 14 তখন ফরীশীরা বাইরে গিয়ে যীশুকে মেরে ফেলার জন্য চক্রান্ত করতে লাগল৷ 15 কিন্তু যীশু সে কথা জানতে পেরে সেখান থেকে চলে গেলেন৷ অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল৷ তাদের মধ্যে যাঁরা রোগী ছিল, তিনি তাদের সকলকে সুস্থ করলেন৷ 16 কিন্তু তাঁর এই কাজের কথা সকলকে বলে বেড়াতে তিনি তাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন৷ 17 আর এইভাবে তাঁর বিষয়ে ভাববাদী যিশাইয়র মাধ্যমে বলা ঈশ্বরের বাণী পূর্ণ হল: 18 ‘এই আমার দাস, এঁকে আমি মনোনীত করেছি৷ আমার অতি প্রিয় জন, যার উপর আমি সন্তুষ্ট৷ আমি তাঁর উপরে আমার আত্মার প্রভাব রাখব, তাতে তিনি অইহুদীদের কাছে ন্যায়নীতির বাণী প্রচার করবেন৷ 19 তিনি কলহ বিবাদ করবেন না, লোকেরা পথে ঘাটে তাঁর গলার স্বর শুনবে না৷ 20 মচকানো বেতগাছ তিনি ভাঙ্গবেন না, মিট্-মিট্ করে জ্বলতে থাকা পলতেকে তিনি নিভিয়ে দেবেন না (যতদিন না ন্যায়নীতিকে জযী করেন ততদিন)৷ 21 সর্বজাতির লোক তাঁর ওপর প্রত্যাশা রাখবে৷যিশাইয় 42:1-4 22 সেই সময় লোকেরা ভূতে পাওয়া একজন লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ লোকটা অন্ধ ও বোবা ছিল৷ যীশু তাকে সুস্থ করলেন: তাতে সে দেখতে পেল ও কথা বলতে পারল৷ 23 এই দেখে লোকেরা বিস্মিত হয়ে বলল, ‘ইনিই কি দায়ূদের সন্তান?’ 24 ফরীশীরা একথা শুনে বললেন, ‘এ তো ভূতদের শাসনকর্তা বেল্সবূলেরশক্তিতে ভূতদের তাড়ায়৷’ 25 যীশু ফরীশীদের মনের কথা বুঝতে পেরে তাদের বললেন, ‘বিবাদে বিভক্ত য়ে কোন রাজ্যইধ্বংস হয়ে যায়৷ য়ে শহর বা পরিবার নিজেদের মধ্যে বিবাদে বিভক্ত তা টিকে থাকতে পারে না৷ 26 শয়তান যদি ভূতকে তাড়ায় তবে সে নিজেইনিজের বিরুদ্ধে ভাগ হয়ে গেলে তার রাজ্য কি করে টিকে থাকবে? 27 আমি যদি বেল্সবুলের শক্তিতে ভূত তাড়াই, তবে তোমাদের লোকেরা কার শক্তিতে তাদের তাড়ায়? সুতরাং তোমাদের নিজেদের অনুগামীরাইপ্রমাণ করবে য়ে তোমরা ভুল বলছ৷ 28 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের আত্মার শক্তিতে ভূতদের তাড়াই, তবে ঈশ্বরের রাজ্য তো তোমাদের কাছে এসে গেছে৷’ 29 ‘আবার বলছি, কোন শক্তিমান লোককে আগে না বেঁধে কেউ কি তার বাড়িতে ঢুকে তার সবকিছু লুট করতে পারে? তাকে বাঁধবার পর তবেই তো তার বাড়ির সবকিছু লুট করতে পারবে৷ 30 ‘য়ে আমার পক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষে, য়ে আমার সঙ্গে কুড়ায় না, সে তা ছড়াচ্ছে৷ 31 তাই আমি তোমাদের বলছি, মানুষের সব পাপ এবং ঈশ্বর নিন্দার ক্ষমা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কোন অসম্মানজনক কথা-বার্তার ক্ষমা হবে না৷ 32 মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ যদি কোন কথা বলে, তাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা বললে তার ক্ষমা নেই , এযুগে বা আগামী যুগে কখনইনা৷ 33 ‘ভাল ফল পেতে হলে ভাল গাছ থাকা দরকার, কিন্তু খারাপ গাছ থাকলে তোমরা খারাপ ফলই পাবে, কারণ ফল দেখেই গাছ চেনা যায়৷ 34 তোমরা কালসাপ! তোমাদের মতো দুষ্ট লোকেরা কি করে ভাল কথা বলতে পারে? মানুষের অন্তরে যা আছে, মুখ দিয়ে তো সে কথাইবের হয়৷ 35 ভাল লোক তার অন্তরে ভাল কথাইসঞ্চিত রাখে, আর ভাল কথাই বলে; কিন্তু যার অন্তরে মন্দ বিষয় থাকে, সে তার মুখ দিয়ে মন্দ কথাইবলে৷ 36 আমি তোমাদের বলছি, লোকে যত বেহিসেবী কথা বলে, বিচারের দিনে তার প্রতিটি কথার হিসাব তাদের দিতে হবে৷ 37 তোমাদের কথার সুত্র ধরেই তোমাদের নির্দোষ বলা হবে, অথবা তোমাদের কথার ওপর ভিত্তি করেইতোমাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে৷’ 38 এরপর কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুর কাছে এসে বললেন, ‘হে গুরু, আমরা আপনার কাছ থেকে কোন চিহ্ন বা অলৌকিক কাজ দেখতে চাই৷’ 39 যীশু তাদের বললেন, ‘এ যুগের দুষ্ট ও পাপী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে; কিন্তু ভাববাদী য়োনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্নইতাদের দেখান হবে না৷ 40 য়োনা য়েমন সেইবিরাট মাছের পেটে তিন দিন তিন রাত ছিলেন, তেমন মানবপুত্র তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর অন্তঃস্থলে কাটাবেন৷ 41 বিচারের দিনে নীনবীয় লোকেরা এই কালের লোকদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়ে তাদের দোষী করবে, কারণ নীনবীয় লোকেরা য়োনার প্রচারের ফলে তাদের মন ফেরাল৷ আর দেখ, য়োনার চেয়ে এখানে আরও একজন মহান আছেন৷ 42 বিচারের দিনে দক্ষিণ দেশের রাণী উঠে এইযুগের লোকদের দোষী করবে, কারণ রাজা শলোমনের জ্ঞানের কথা শোনবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন, আর দেখ শলোমনের চেয়ে মহান একজন এখানে আছেন৷ 43 ‘যখন কোন দুষ্ট আত্মা কোন মানুষের মধ্য থেকে বের হয়ে যায়, তখন সে জলবিহীন শুকনো অঞ্চলে বিশ্রাম পাবার জন্য ঘোরাঘুরি করতে থাকে কিন্তু তা পায় না৷ 44 তারপর সে বলে, ‘আমি য়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি, সেখানে ফিরে যাব৷’ আর ফিরে এসে দেখে সেই ঘর খালি পড়ে আছে; পরিষ্কার ও সাজানো আছে৷ 45 পরে সে গিয়ে তার থেকে আরো খারাপ অন্য সাতটা দুষ্ট আত্মাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসে৷ তারপর তারা সকলে সেখানে গিয়ে বাস করতে থাকে, তাতে সেই লোকটার প্রথম অবস্থা থেকে শেষ অবস্থা আরো খারাপ হয়ে ওঠে৷ এই যুগের মন্দ লোকদের অবস্থাও সেরকম হবে৷’ 46 যীশু যখন সমবেত লোকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তাঁর মা ও ভাইরা এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছায় বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন৷ 47 সেই সময় একজন লোক তাঁকে বলল, ‘দেখুন, আপনার মা ও ভাইরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা আপনার সঙ্গে কথা বলতে চান৷’ 48 যীশু তখন তাকে বললেন, ‘কে আমার মা? কারাই বা আমার ভাই ?’ 49 এরপর তিনি তাঁর অনুগামীদের দেখিয়ে বললেন, ‘দেখ! এরাই আমার মা, আমার ভাই৷ 50 হ্যাঁ, য়ে কেউ আমার স্বর্গের পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার মা, ভাই ও বোন৷’
1 সেই দিনই যীশু ঘর থেকে বের হয়েহ্রদের ধারে এসে বসলেন৷ 2 তাঁর চারপাশে বহু লোক এসে জড় হল, তাইতিনি একটা নৌকায় উঠে বসলেন, আর সেই সমবেত জনতা তীরে দাঁড়িয়ে রইল৷ 3 তখন তিনি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ তিনি বললেন, ‘একজন চাষী বীজ বুনতে গেল৷ 4 সে যখন বীজ বুনছিল, তখন কতকগুলি বীজ পথের ধারে পড়ল, আর পাখিরা এসে সেগুলি খেয়ে ফেলল৷ 5 আবার কতকগুলি বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, সেখানে মাটি বেশী ছিল না৷ মাটি বেশী না থাকাতে তাড়াতাড়ি অঙ্কুর বের হল৷ 6 কিন্তু সূর্য় উঠলে পর অঙ্কুরগুলি ঝলসে গেল, আর শেকড় মাটির গভীরে যায়নি বলে তা শুকিয়ে গেল৷ 7 আবার কিছু বীজ কাঁটাঝোপের মধ্যে পড়ল৷ কাঁটাঝোপ বেড়ে উঠে চারাগুলোকে চেপে দিল৷ 8 কিছু বীজ ভাল জমিতে পড়ল, তাতে ফসল হতে লাগল৷ সে যা বুনেছিল, কোথাও তার ত্রিশগুণ, কোথাও ষাটগুণ, কোথাও শতগুণ ফসল হল৷ 9 যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক!’ 10 যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘কেন আপনি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে লোকদের সঙ্গে কথা বললেন?’ 11 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে ঈশ্বরের গুপ্ত সত্য বোঝার ক্ষমতা কেবল মাত্র তোমাদেরই দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সকলকে এ ক্ষমতা দেওয়া হয় নি৷ 12 কারণ যার কিছু আছে, তাকে আরও দেওয়া হবে, তাতে তার প্রচুর হবে; কিন্তু যার নেই, তার যা আছে তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে৷ 13 আমি তাদের সঙ্গে দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলি, কারণ তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শোনে না আর তারা বোঝেও না৷ 14 এদের এই অবস্থার মধ্য দিয়েই ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হয়েছে:‘তোমরা শুনবে আর শুনবে, কিন্তু বুঝবে না৷ তোমরা তাকিয়ে থাকবে, কিন্তু কিছুইদেখবে না৷ 15 এইসব লোকদের অন্তর অসাড়, এরা কানে শোনে না, চোখ থাকতেও সত্য দেখতে অস্বীকার করে৷ এরকমটাই ঘটেছে য়েন এরা চোখে দেখে, কানে শুনে আর অন্তরে বুঝে ভাল হবার জন্য আমার কাছে ফিরে না আসে৷’ যিশাইয় 6:9-10 16 কিন্তু ধন্য তোমাদের চোখ, কারণ তা দেখতে পায়; আর ধন্য তোমাদের কান, কারণ তা শুনতে পায়৷ 17 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যা দেখছ অনেক ভাববাদী ও ধার্মিক লোকেরা দেখতে চেয়েও তা দেখতে পায় নি৷ আর তোমরা যা যা শুনছ, তা তারা শুনতে চেয়েও শুনতে পায় নি৷ 18 ‘এখন তবে সেইচাষী ও তার বীজ বোনার মর্মার্থ শোন৷ 19 কেউ যখন স্বর্গরাজ্যের শিক্ষার বিষয় শুনেও তা বোঝে না, তখন দুষ্ট আত্মা এসে তার অন্তরে যা বোনা হয়েছিল তা সরিয়ে নেয়৷ এটা হল সেই পথের ধারে পড়া বীজের কথা৷ 20 আর পাথুরে জমিতে য়ে বীজ পড়েছিল, তা সেই সব লোকদের কথাই বলে যাঁরা স্বর্গরাজ্যের শিক্ষা শুনে সঙ্গে সঙ্গে আনন্দের সাথে তা গ্রহণ করে; 21 কিন্তু তাদের মধ্যে সেই শিক্ষার শেকড় ভাল করে গভীরে য়েতে দেয় না বলে তারা অল্প সময়ের জন্য স্থির থাকে৷ যখন সেই শিক্ষার জন্য সমস্যা, দুঃখ কষ্ট ও তাড়না আসে, তখনই তারা পিছিয়ে যায়৷ 22 কাঁটাঝোপে য়ে বীজ পড়েছিল, তা এমন লোকদের বিষয় বলে যাঁরা সেই শিক্ষা শোনে, কিন্তু সংসারের চিন্তা ভাবনা ও ধনসম্পত্তির মাযা সেই শিক্ষাকে চেপে রাখে৷ সেজন্য তাদের জীবনে কোন ফল হয় না৷ 23 য়ে বীজ উত্কৃষ্ট জমিতে বোনা হল, তা এমন লোকদের কথা প্রকাশ করে যাঁরা শিক্ষা শোনে, তা বোঝে এবং ফল দেয়৷ কেউ একশ গুণ, কেউ ষাট গুণ আর কেউ বা তিরিশ গুণ ফল দেয়৷ 24 এবার যীশু তাদের কাছে আর একটি দৃষ্টান্ত রাখলেন৷ ‘স্বর্গরাজ্য এমন একজন লোকের মতো যিনি তাঁর জমিতে ভাল বীজ বুনলেন৷ 25 কিন্তু লোকেরা যখন সবাইঘুমিয়ে ছিল, তখন সেইমালিকের শত্রু এসে গমের মধ্যে শ্যামা ঘাসের বীজ বুনে দিয়ে চলে গেল৷ 26 শেষে গমের চারা যখন বেড়ে উঠে ফল ধরল, তখন তার মধ্যে শ্যামাঘাসও দেখা গেল৷ 27 সেইমালিকের মজুররা এসে তাঁকে বলল, ‘আপনি কি জমিতে ভাল বীজ বোনেন নি? তবে শ্যামাঘাস কোথা থেকে এল?’ 28 তিনি তাদের বললেন, ‘এটা নিশ্চয়ই কোন শত্রুর কাজ৷’তাঁর চাকরেরা তখন তাঁকে বলল, ‘আপনি কি চান, আমরা গিয়ে কি শ্যামা ঘাসগুলি উপড়ে ফেলব?’ 29 ‘তিনি বললেন, ‘না, কারণ তোমরা যখন শ্যামা ঘাস ওপড়াতে যাবে তখন হয়তো ঐগুলোর সাথে গমের গাছগুলোও উপড়ে ফেলবে৷ 30 ফসল কাটার সময় না হওয়া পর্যন্ত একসঙ্গে সব বাড়তে দাও৷ পরে ফসল কাটার সময় আমি মজুরদের বলব তারা য়েন প্রথমে শ্যামা ঘাস সংগ্রহ করে আঁটি আঁটি করে বাঁধে ও তা পুড়িয়ে দেয় এবং গম সংগ্রহ করে গোলায় তোলে৷’ 31 যীশু তাদের সামনে আর একটি দৃষ্টান্ত রাখলেন, ‘স্বর্গরাজ্য এমন একটা সরষে দানার মতো যা নিয়ে কোন একজন লোক তার জমিতে লাগাল৷ 32 সমস্ত বীজের মধ্যে ওটা সত্যিই সবচেয়ে ছোট, কিন্ত গাছ হয়ে বেড়ে উঠলে পর তা সমস্ত শাক-সব্জীর থেকে বড় হয়ে একটা বড় গাছে পরিণত হয়, যাতে পাখিরা এসে তার ডালপালায় বাসা বাঁধে৷’ 33 তিনি তাদের আর একটা দৃষ্টান্ত বললেন, ‘স্বর্গরাজ্য য়েন খামিরের মতো৷ একজন স্ত্রীলোক তা নিয়ে একতাল ময়দার সঙ্গে মেশাল ও তার ফলে সমস্ত ময়দা ফেঁপে উঠল৷’ 34 জনসাধারণের কাছে উপদেশ দেবার সময় যীশু প্রায়ই এই ধরণের দৃষ্টান্ত দিতেন৷ তিনি দৃষ্টান্ত ছাড়া কোন শিক্ষাই দিতেন না৷ 35 যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন, তা পূর্ণ হয়:‘আমি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলব; জগতের সৃষ্টি থেকে য়ে সমস্ত বিষয় এখনও গুপ্ত আছে সেগুলি প্রকাশ করব৷’ গীতসংহিতা 78:2 36 পরে যীশু লোকদের বিদায় দিয়ে ঘরে চলে গেলেন৷ তখন তাঁর শিষ্যরা এসে তাঁকে বললেন, ‘সেইক্ষেতের ও শ্যামা ঘাসের দৃষ্টান্তটি আমাদের বুঝিয়ে দিন৷’ 37 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘যিনি ভাল বীজ বোনেন, তিনি মানবপুত্র৷ 38 জমি বা ক্ষেত হল এই জগত, স্বর্গরাজ্যের লোকরা হল ভাল বীজ৷ আর শ্যামাঘাস তাদেরই বোঝায়, যাঁরা মন্দ লোক৷ 39 গমের মধ্যে য়ে শত্রু শ্যামা ঘাস বুনে দিয়েছিল, সে হল দিয়াবল৷ ফসল কাটার সময় হল জগতের শেষ সময় এবং মজুররা যাঁরা সংগ্রহ করে, তারা ঈশ্বরের স্বর্গদূত৷ 40 ‘শ্যামা ঘাস জড় করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এইপৃথিবীর শেষের সময়েও ঠিক তেমনি হবে৷ 41 মানবপুত্র তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠিয়ে দেবেন, আর যাঁরা পাপ করে ও অপরকে মন্দের পথে ঠেলে দেয়, তাদের সবাইকে সেইস্বর্গদূতরা মানবপুত্রের রাজ্যের মধ্য থেকে একসঙ্গে জড় করবেন৷ 42 তাদের জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে ফেলে দেবেন৷ সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে৷ 43 তারপর যাঁরা ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে, তারা পিতার রাজ্যে সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেবে৷ যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক! 44 ‘স্বর্গরাজ্য ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ধনের মতো৷ একজন লোক তা খুঁজে পেয়ে আবার সেই ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখল৷ সে এতে এত খুশী হল য়ে সেখান থেকে গিয়ে তার সর্বস্ব বিক্রি করে সেই ক্ষেতটি কিনল৷ 45 ‘আবার স্বর্গরাজ্য এমন একজন সওদাগরের মতো, য়ে ভাল মুক্তা খুঁজছিল৷ 46 যখন সে একটা খুব দামী মুক্তার খোঁজ পেল, তখন গিয়ে তার যা কিছু ছিল সব বিক্রি করে সেইমুক্তাটাই কিনল৷ 47 ‘স্বর্গরাজ্য আবার এমন একটা বড় জালের মতো যা সমুদ্রে ফেলা হলে তাতে সব রকম মাছ ধরা পড়ল৷ 48 জাল পূর্ণ হলে লোকরা সেটা পাড়ে টেনে তুলল, পরে তারা বসে ভালো মাছগুলো বেছে ঝুড়িতে রাখল এবং খারাপগুলো ফেলে দিল৷ 49 জগতের শেষের দিনে এই রকমই হবে৷ স্বর্গদূতরা এসে ধার্মিক লোকদের মধ্য থেকে দুষ্ট লোকদের আলাদা করবেন৷ 50 স্বর্গদূতরা জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে দুষ্ট লোকদের ফেলে দেবেন৷ সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘসবে৷’ 51 যীশু তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা কি এসব কথা বুঝলে?’তারা তাঁকে বলল, ‘হ্যাঁ, আমরা বুঝেছি৷’ 52 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘প্রত্যেক ব্যবস্থার শিক্ষক, যিনি স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেছেন তিনি এমন একজন গৃহস্থের মতো, যিনি তাঁর ভাঁড়ার থেকে নতুন ও পুরানো উভয় জিনিসই বের করেন৷’ 53 যীশু এই দৃষ্টান্তগুলি বলার পর সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 54 তারপর তিনি নিজের শহরে গিয়ে সেখানে সমাজ-গৃহে তাদের মধ্যে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ তাঁর কথা শুনে লোকেরা আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তারা বলল, ‘এইজ্ঞান ও এইসব অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা এ কোথা থেকে পেল? 55 এ কি সেই ছূতোর মিস্ত্রির ছেলে নয়? এর মায়ের নাম কি মরিয়ম নয়? আর এর ভাইদের নাম কি যাকোব, য়োষেফ, শিমোন ও যিহূদা নয়? 56 আর এর সব বোনেরা এখানে আমাদের মধ্যে কি থাকে না? তাহলে কোথা থেকে সে এসব পেল?’ 57 এইভাবে তাঁকে মেনে নিতে তারা মহা সমস্যায় পড়ল৷কিন্তু যীশু তাদের বললেন, ‘নিজের গ্রাম ও বাড়ি ছাড়া আর সব জায়গাতেই ভাববাদী সম্মান পান৷’ 58 তাঁর প্রতি লোকদের অবিশ্বাস দেখে তিনি সেখানে বেশী অলৌকিক কাজ করলেন না৷
1 সেই সময় গালীলের শাসনকর্তা হেরোদ, যীশুর বিষয়শুনতেপেলেন৷ 2 তিনি তাঁরচাকরদের বললেন, ‘এই লোক নিশ্চয়ই বাপ্তিস্মদাতা য়োহন৷ সে নিশ্চয়ইমৃত লোকদের মধ্য থেকে বেঁচে উঠেছে৷ আর সেইজন্যইএইসব অলৌকিক কাজ করতে পারছে৷ 3 এই হেরোদই য়োহনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারের মধ্যে শেকলে বেঁধে রেখেছিলেন৷ তাঁর ভাই ফিলিপেরস্ত্রী হেরোদিয়ার অনুরোধেই তিনি একাজ করেছিলেন৷ 4 কারণ য়োহন হেরোদকে বার-বার বলতেন, ‘হেরোদিয়াকে তোমার ঐভাবে রাখা বৈধ নয়৷’ 5 হেরোদ এই জন্য য়োহনকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি লোকদের ভয় করতেন, কারণ সাধারণ লোক য়োহনকে ভাববাদী বলে মানত৷ 6 এরপর হেরোদের জন্মদিন এল, সেইউত্সবে হেরোদিয়ার মেয়ে, হেরোদ ও তাঁর অতিথিদের সামনে নেচে হেরোদকে খুব খুশী করল৷ 7 সেজন্য হেরোদ শপথ করে বললেন য়ে, সে যা চাইবে তিনি তাকে তাইদেবেন৷ 8 মেয়েটি তার মায়ের পরামর্শ অনুসারে বলল, ‘থালায় করে বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের মাথাটা আমায় এনে দিন৷’ 9 যদিও রাজা হেরোদ এতে খুব দুঃখিত হলেন, তবু তিনি শপথ করেছিলেন বলে এবং যাঁরা তাঁর সঙ্গে খেতে বসেছিলেন তারা সেই শপথের কথা শুনেছিলেন বলে সম্মানের কথা ভেবে তিনি তা দিতে হুকুম করলেন৷ 10 তিনি লোক পাঠিয়ে কারাগারের মধ্যে য়োহনের শিরশ্ছেদ করালেন৷ 11 এরপর য়োহনের মাথাটি থালায় করে নিয়ে এসে সেই মেয়েকে দেওয়া হলে, সে তা নিয়ে তার মায়ের কাছে গেল৷ 12 তারপর য়োহনের অনুগামীরা এসে তাঁর দেহটি নিয়ে গিয়ে কবর দিলেন৷ আর তাঁরা যীশুর কাছে গিয়ে সব কথা জানালেন৷ 13 যীশু সব কথা শুনে একা একটা নৌকা করে সেখান থেকে রওনা হয়ে কোন এক নির্জন জায়গায় চলে গেলেন৷ কিন্তু লোকেরা তা জানতে পেরে বিভিন্ন নগর থেকে বেরিয়ে হাঁটা পথ ধরে তাঁর সঙ্গ ধরল৷ 14 তিনি নৌকা থেকে তীরে নেমে দেখলেন বহুলোক জড় হয়েছে, তাদের প্রতি তাঁর করুণা হল৷ তাদের মধ্যে যাঁরা অসুস্থ ছিল, তাদের সকলকে তিনি সুস্থ করলেন৷ 15 সন্ধ্যা হলে শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘এ জনহীন প্রান্তর আর এখন বেলাও শেষ হয়ে এল, এইলোকদের চলে য়েতে বলুন, তারা য়েন গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য খাবার কিনে নিতে পারে৷’ 16 কিন্তু যীশু তাদের বললেন, ‘তাদের যাবার দরকার নেই, তোমরাইতাদের কিছু খেতে দাও৷’ 17 তখন তার শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘এখানে আমাদের কাছে পাঁচখানা রুটি আর দুটো মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই৷’ 18 তিনি তাঁদের বললেন, ‘ওগুলো আমার কাছে নিয়ে এস৷’ 19 এরপর তিনি সেই লোকদের ঘাসের ওপর বসে য়েতে বললেন৷ পরে তিনি সেই পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে সেইখাবারের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন৷ তারপর সেই রুটিটুকরো টুকরো করে তাঁর শিষ্যদের হাতে পরিবেশন করার জন্য দিলেন৷ শিষ্যরা এক এক করে লোকদের তা দিলেন৷ 20 আর লোকেরা সকলে খেয়ে পরিতৃপ্ত হল৷ পরে শিষ্যরা পড়ে থাকা খাবারের টুকরো-টাকরা তুলে নিলে তাতে বারোটি টুকরি ভর্তি হয়ে গেল; 21 যাঁরা খেয়েছিল তাদের মধ্যে স্ত্রীলোক ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ছাড়া পাঁচ হাজার পুরুষ মানুষ ছিল৷ 22 এরপরইযীশু তাঁর শিষ্যদের নৌকায় করে হ্রদের অপর পারে তাঁর সেখানে যাবার আগে তাদের পৌঁছাতে বললেন৷ এরপর তিনি লোকদের বিদায় জানালেন৷ 23 লোকদের বিদায় দিয়ে., প্রার্থনা করবার জন্য তিনি একা পাহাড়ে উঠে গেলেন৷ অন্ধকার হয়ে গেলেও তিনি সেখানে একাই রইলেন৷ 24 নৌকাটি তীর থেকে দূরে গিয়ে পড়েছিল, উল্টো হাওয়া বইতে থাকায় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভীষণভাবে দুলছিল৷ 25 সকাল তিনটে থেকে ছ’টার মধ্যে যীশুর শিষ্যরা নৌকায় ছিলেন৷ এমন সময় যীশু জলের উপর দিয়ে হেঁটে তাঁদের কাছে এলেন৷ 26 যীশুকে হ্রদের জলের ওপর দিয়ে হেঁটে আসতে দেখে শিষ্যরা ভয়ে আঁতকে উঠলেন, তারা ‘ভূত, ভূত’ বলে ভয়ে চিত্কার করে উঠলেন৷ 27 সঙ্গে সঙ্গে যীশু তাঁদের বললেন, ‘এতো আমি! সাহস কর! ভয় করো না৷’ 28 এর উত্তরে পিতর তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, এ যদি সত্যিই আপনি হন, তবে জলের ওপর দিয়ে আমাকেও আপনার কাছে আসতে আদেশ করুন৷’ 29 যীশু বললেন, ‘এস৷’ পিতর তখন নৌকা থেকে নেমে জলের ওপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যীশুর দিকে এগোতে লাগলেন৷ 30 কিন্তু যখন দেখলেন প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাস বইছে, তখন খুবই ভয় পেয়ে গেলেন৷ তিনি আস্তে আস্তে ডুবতে লাগলেন আর চিত্কার করে বললেন, ‘প্রভু, আমাকে বাঁচান৷’ 31 যীশু তখনইহাত বাড়িয়ে পিতরকে ধরে ফেলে বললেন, ‘হে অল্প-বিশ্বাসী! তুমি কেন সন্দেহ করলে?’ 32 যীশু ও পিতর নৌকায় উঠলে পর ঝোড়ো বাতাস থেমে গেল৷ 33 যাঁরা নৌকায় ছিলেন তাঁরা যীশুকে প্রণাম করে বললেন, ‘আপনি সত্যিইঈশ্বরের পুত্র৷’ 34 তাঁরা ্ব্রদ পার হয়ে গিনেষরত্ অঞ্চলে এলেন৷ 35 সেইঅঞ্চলের লোকরা তাঁকে চিনতে পেরে সেইঅঞ্চলের সব জায়গায় লোকদের কাছে তাঁর আসার খবর রটিয়ে দিল৷ তখন লোকেরা তাদের মধ্যে যাঁরা অসুস্থ ছিল তাদের সকলকে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ 36 তারা যীশুকে অনুরোধ করল, য়েন সেইরোগীরা কেবল তাঁর পোশাকের ঝালর স্পর্শ করতে পারে৷ আর যাঁরা স্পর্শ করল, তারাইসুস্থ হয়ে গেল৷
1 জেরুশালেম থেকে কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন৷ তাঁরা যীশুকে বললেন, 2 ‘আমাদের পিতৃপুরুষরা য়ে নিয়ম আমাদের দিয়েছেন, আপনার অনুগামীরা কেন তা মেনে চলে না? খাওয়ার আগে তারা ঠিকমতো হাত ধোয় না!’ 3 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের পরম্পরাগত আচার পালনের জন্য তোমরাই বা কেন ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করো? 4 কারণ ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমরা বাবা-মাকে সম্মান করো৷’আর ‘য়ে কেউ তার বাবা-মার নিন্দা করবে তার মৃত্যুদণ্ড হবে৷’ 5 কিন্তু তোমরা বলে থাকো, কেউ যদি তার বাবা কিংবা মাকে বলে, ‘আমি তোমাদের কিছুই সাহায্য করতে পারব না, কারণ তোমাদের দেবার মত যা কিছু সব আমি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে দানস্বরূপ উত্সর্গ করেছি,’ 6 তবে বাবা মায়ের প্রতি তার কর্তব্য কিছু থাকে না৷ তাই তোমাদের পরম্পরাগত রীতির দ্বারা তোমরা ঈশ্বরের আদেশ মূল্যহীন করেছ৷ 7 তোমরা হলে ভণ্ড! ভাববাদী যিশাইয় তোমাদের বিষয়ে ঠিকই ভাববাণী করেছেন: 8 ‘এই লোকগুলো মুখেই আমায় সম্মান করে, কিন্তু তাদের অন্তর আমার থেকে অনেক দূরে থাকে৷ 9 এরা আমার য়ে উপাসনা করে তা মিথ্যা, কারণ এরা য়ে শিক্ষা দেয় তা মানুষের তৈরী কতকগুলি নিয়ম মাত্র৷'" যিশাইয় 29:13 10 এরপর যীশু লোকদের তাঁর কাছে ডেকে বললেন, ‘আমি যা বলি তা শোন ও তা বুঝে দেখ৷ 11 মানুষ যা খায় তা মানুষকে অশুচি করে না৷ কিন্তু মুখের ভেতর থেকে যা বের হয়ে আসে, তাইমানুষকে অশুচি করে৷’ 12 তখন যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘আপনি কি জানেন ফরীশীরা আপনার এই কথা শুনে অপমান বোধ করছেন?’ 13 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘য়ে চারাগুলি আমার স্বর্গের পিতা লাগাননি, সেগুলি উপড়ে ফেলা হবে৷ 14 তাই ওদের কথা বাদ দাও৷ ওরা নিজেরা অন্ধ, ওরা আবার অন্য অন্ধদের পথ দেখাচ্ছে৷ দেখ, অন্ধ যদি অন্ধকে পথ দেখাতে যায়, তবে দুজনেইগর্তে পড়বে৷’ 15 তখন পিতর যীশুকে বললেন, ‘আপনি যা বললেন, তার অর্থ আমাদের বুঝিয়ে দিন৷’ 16 যীশু বললেন, ‘তোমরাও কি এখনও বুঝতে পারছ না? 17 তোমরা কি বোঝ না য়ে, যা কিছু মুখের মধ্যে যায় তা উদরে গিয়ে পৌঁছায় ও পরে তা বেরিয়ে পায়খানায় পড়ে৷ 18 কিন্তুমুখেরমধ্য থেকে যা বের হয় তা মানুষের অন্তর থেকেই বের হয় আর তাই মানুষকে অশুচি করে তোলে৷ 19 আমি একথা বলছি কারণ মানুষের অন্তর থেকেইসমস্ত মন্দচিন্তা, নরহত্যা, ব্যভিচার, য়ৌনপাপ, চুরি, মিথ্যা সাক্ষ্য ও নিন্দা বার হয়৷ 20 এসবইমানুষকে অশুচি করে, কিন্তু হাত না ধুয়ে খেলে মানুষ অশুচি হয় না৷’ 21 এরপর যীশু সেইজায়গা ছেড়ে সোর ও সীদোন অঞ্চলে গেলেন৷ 22 একজন কনান দেশীয় স্ত্রীলোক সেইঅঞ্চল থেকে এসে চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘হে প্রভু, দায়ূদের পুত্র, আমাকে দয়া করুন৷ একটা ভূত আমার মেয়ের ওপর ভর করেছে, তাতে সে ভয়ানক যন্ত্রণা পাচ্ছে৷’ 23 যীশু তাকে একটা কথাও বললেন না, তখন তাঁর শিষ্যরা এসে যীশুকে অনুরোধ করে বললেন, ‘ওকে চলে য়েতে বলুন, কারণ ও চিত্কার করতে করতে আমাদের পিছন পিছন আসছে৷’ 24 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘সকলের কাছে নয়, কেবল ইস্রায়েলের হারানো মেষদের কাছে আমাকে পাঠানো হয়েছে৷’ 25 তখন সেই স্ত্রীলোকটি যীশুর কাছে এসে তাঁকে প্রণাম করে বলল, ‘প্রভু, দয়া করে আমায় সাহায্য করুন!’ 26 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরের সামনে ছুঁড়ে দেওয়া ঠিক নয়৷’ 27 স্ত্রীলোকটি তখন বলল, ‘হ্যাঁ, প্রভু, কিন্তু মনিবদের টেবিল থেকে খাবারের য়ে সব টুকরো পড়ে কুকুরেই তা খায়৷’ 28 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘হে নারী, তোমার বড়ইবিশ্বাস! যাও, তুমি য়েমন চাইছ, তেমনইহোক৷’ আর সেইমুহূর্ত্ত থেকেইতার মেয়েটি সুস্থ হয়ে গেল৷যীশু বহু মানুষকে আরোগ্যদান করলেন 29 এরপর যীশু সেখান থেকে গালীলহ্রদের তীর ধরে চললেন৷ তিনি একটা পাহাড়ের ওপর উঠে সেখানে বসলেন৷ 30 আর বহু লোক সেখানে এসে জড়ো হল, তারা খোঁড়া, অন্ধ, নুলো, বোবা এবং আরও অনেককে সঙ্গে নিয়ে এল৷ তারা ঐসব রোগীদের তাঁর পায়ের কাছে রাখল আর যীশু তাদের সকলকে সুস্থ করলেন৷ 31 লোকেরা যখন দেখল বোবা কথা বলছে, নূলো সুস্থ সবল হচ্ছে, খোঁড়া চলাফেরা করছে, অন্ধরা দৃষ্টিশক্তি লাভ করছে, তখন তারা আশ্চর্য হয়ে গেল আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে লাগল৷ 32 যীশু তখন তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘এইলোকদের জন্য আমার মনে কষ্ট হচ্ছে, কারণ এরা আজ তিন দিন হল আমার সঙ্গে সঙ্গে আছে, এদের কাছে আর কোন খাবার নেই৷ এই ক্ষুধার্ত অবস্থায় এদের আমি চলে য়েতে বলতে পারি না, তাহলে হয়তো এরা পথে মুর্ছা যাবে৷’ 33 তখন শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘এইনির্জন জায়গায় এত লোককে খাওয়ানোর মতো অতো খাবার আমরা কোথায় পাবো?’ 34 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে কটা রুটি আছে?’তারা বললেন, ‘সাতখানা রুটি ও কয়েকটা ছোট মাছ আছে৷’ 35 যীশু সেই সব লোককে মাটিতে বসে য়েতে বললেন৷ 36 তারপর তিনি সেই সাতটা রুটি ও মাছ কটা নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, পরে সেই রুটি টুকরো করে শিষ্যদের হাতে দিলেন, আর শিষ্যরা তা লোকদের দিতে লাগলেন৷ 37 লোকেরা সবাইবেশ পেট ভরে খেল৷ টুকরো-টাকরা যা পড়ে রইল, তা তোলা হলে পর তা দিয়ে সাতটাটুকরি ভর্তি হয়ে গেল৷ 38 যারা খেয়েছিল তাদের মধ্যে মহিলা ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বাদ দিয়ে কেবল পুরুষ মানুষের সংখ্যাই ছিল চার হাজার৷ 39 এরপর যীশু লোকদের বিদায় দিয়ে নৌকায় উঠে মগদনের অঞ্চলে গেলেন৷
1 ফরীশী ও সদ্দূকীরা যীশুরকাছেএসেতাঁকে পরীক্ষা করতে চাইলেন৷ তাই তারা ঐশ্বরিক শক্তির চিহ্নস্বরূপ কোন অলৌকিক কাজ করে দেখাতে বললেন৷ 2 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘সন্ধ্যা হলে তোমরা বলে থাকো দিনে আবহাওয়া ভাল থাকবে, কারণ আকাশের রঙ লাল হয়েছে৷ 3 আবার সকাল বেলা বলে থাকো, আজকে ঝোড়ো আবহাওয়া চলবে কারণ আজ আকাশ লাল ও অন্ধকার হয়েছে৷ তোমরা আকাশের অবস্থা ভালই বিচার করে বোঝ, অথচ কালের চিহ্ন বুঝতে পারো না৷ 4 এ যুগের দুষ্ট ও ভ্রষ্টাচারী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু য়োনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্নই তাদের দেখানো হবে না৷’ এরপর যীশু তাদের ছেড়ে সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 5 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা হ্রদের ওপারে যাবার সময় সঙ্গে রুটি নিয়ে য়েতে ভুলে গিয়েছিলেন৷ 6 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা সাবধান! ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সতর্ক থেকো৷’ 7 শিষ্যরা নিজেদেরমধ্যে বলাবলি করতেলাগলেন, ‘আমরা রুটিআনিনি বলে সন্ভবতঃ উনি এইকথা বলছেন?’ 8 তাঁরা কি বলাবলি করছেন, তা জানতে পেরে যীশু বললেন, ‘হে অল্প-বিশ্বাসী মানুষ, তোমরা নিজেদের মধ্যে কেন বলাবলি করছ য়ে তোমাদের রুটি নেই? 9 তোমরা কি বোঝ না অথবা তোমাদের কি মনে নেই সেই পাঁচ হাজার লোকের জন্য পাঁচ খানা রুটির কথা আর তারপরে কত টুকরি তোমরা ভর্তি করেছিলে? 10 আবার সেইচার হাজার লোকের জন্য সাতখানা রুটির কথা, আর কত টুকরি তোমরা তুলে নিয়েছিলে? 11 তোমরা কেন বুঝতে পার না য়ে আমি তোমাদের রুটির বিষয় বলিনি? আমি তোমাদের ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সতর্ক থাকতে বলেছি৷’ 12 তখন তাঁরা বুঝতে পারলেন য়ে রুটির খামির থেকে তিনি তাঁদের সতর্ক হতে বলেন নি, কিন্তু বলেছিলেন তাঁরা য়েন ফরীশী ও সদ্দূকীদের শিক্ষা থেকে সাবধান হন৷ 13 এরপর যীশু কৈসরিয়া, ফিলিপী অঞ্চলে এলেন৷ তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘মানবপুত্রকে?’ এবিষয়ে লোকে কি বলে? 14 তাঁরা বললেন, ‘কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা য়োহন, কেউ বলে এলীয়,আবার কেউ বলে আপনি যিরমিয়বা ভাববাদীদের মধ্যে কেউ একজন হবেন৷’ 15 তিনি তাঁদের বললেন, ‘কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?’ 16 এর উত্তরে শিমোন পিতর বললেন, ‘আপনি সেইমশীহ (খ্রীষ্ট), জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র৷’ 17 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘য়োনার ছেলে শিমোন, তুমি ধন্য, কোনো মানুষের কাছ থেকে একথা তুমি জাননি, কিন্তু আমার স্বর্গের পিতা একথা তোমায় জানিয়েছেন৷ 18 আর আমিও তোমাকে বলছি, তুমি পিতরআর এইপাথরের ওপরেই আমি আমার মণ্ডলী গেঁথে তুলব৷ মৃত্যুর কোন শক্তিতার ওপর জয়লাভ করতে পারবে না৷ 19 আমি তোমাকে স্বর্গরাজ্যের চাবিগুলি দেব, তাতে তুমি এইপৃথিবীতে যা বাঁধবে তা স্বর্গেও বেঁধে রাখা হবে৷ আর পৃথিবীতে যা হতে দেবে তা স্বর্গেও হতে দেওযা হবে৷’ 20 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন, য়েন তারা কাউকে না বলে তিনিইখ্রীষ্ট৷ 21 সেই সময় থেকে যীশু তাঁর শিষ্যদের জানাতে লাগলেন য়ে তাঁকে অবশ্যইজেরুশালেমে য়েতে হবে৷ আর সেখানে কিভাবে তাঁকে ইহুদী নেতা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হবে৷ তাঁকে মেরে ফেলা হবে ও তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে বেঁচে উঠবেন৷ 22 তখন পিতর তাঁকে একপাশে ডেকে নিয়ে ভর্ত্সনার সুরে বললেন, ‘প্রভু, এসবের হাত থেকে ঈশ্বর আপনাকে রক্ষা করুন৷ এর কোন কিছুই আপনার প্রতি ঘটবে না৷’ 23 যীশু পিতরের দিকে ফিরে বললেন, ‘আমার কাছ থেকে দূর হও শয়তান! তুমি আমার বাধা স্বরূপ! তুমি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে এ বিষয় চিন্তা করছ, ঈশ্বরের যা তা তুমি ভাবছ না৷’ 24 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন ‘কেউ যদি আমায় অনুসরণ করতে চায় তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক আর নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক৷ 25 য়ে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে৷ কিন্তু য়ে আমার জন্য তার নিজের প্রাণ হারাতে চাইবে সে তা রক্ষা করবে৷ 26 কেউ যদি সমস্ত জগত্ লাভ করে তার প্রাণ হারায় তবে তার কি লাভ? প্রাণ ফিরে পাবার জন্য তার দেবার মতো কি-ইবা থাকতে পারে? 27 মানবপুত্র যখন তাঁর স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর পিতার মহিমায় আসবেন, তখন তিনি প্রত্যেক লোককে তার কাজ অনুসারে প্রতিদান দেবেন৷ 28 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যাঁরা এখানে দাঁড়িয়ে আছে তাদের মধ্যে এমন কেউ কেউ আছে যার কোনও মতে মৃত্যু দেখবে না, য়ে পর্যন্ত মানবপুত্রকে তাঁর রাজ্যে আসতে না দেখে৷’
1 ছ’দিন পর যীশু পিতর, যাকোব ও তার ভাই য়োহনকেসঙ্গে নিয়ে নির্জন এক পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে উঠলেন৷ 2 সেখানে তাদের সামনে যীশুর রূপান্তর হল৷ তাঁর মুখমণ্ডল সূর্যের মতো উজ্জ্বল ও তাঁর পোশাক আলোর মত সাদা হয়ে গেল৷ 3 তারপর হঠাত্ মোশি ও এলীয় তাদের কাছে উপস্থিত হয়ে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন৷ 4 এই দেখে পিতর যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, ভালইহয়েছে য়ে আমরা এখানে আছি৷ যদি আপনার ইচ্ছে হয় তবে আমি এখানে তিনটে তাঁবু খাটাতে পারি, একটা হবে আপনার, একটা মোশির জন্য আর একটা এলীয়র জন্য৷’ 5 পিতর যখন কথা বলছিলেন, সেইসময় একটা উজ্জ্বল মেঘ তাঁদের ঢেকে দিল৷ সেই মেঘ থেকে একটি রব শোনা গেল, ‘ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, এর প্রতি আমি খুবই প্রীত৷ তোমরা এঁর কথা শোন৷’ 6 যীশুর শিষ্যরা একথা শুনে খুব ভয় পেয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে গেলেন৷ 7 তখন যীশু এসে তাদের স্পর্শ করে বললেন, ‘ওঠো, ভয় করো না৷’ 8 তাঁরা মুখ তুলে তাকালে যীশু ছাড়া আর কাউকে সেখানে দেখতে পেলেন না৷ 9 তাঁরা যখন সেই পাহাড় থেকে নেমে আসছিলেন, সেই সময় যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা যা দেখলে তা মানবপুত্র মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে না ওঠা পর্যন্ত কাউকে বলো না৷’ 10 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাহলে ব্যবস্থার শিক্ষকরা কেন বলে থাকেন য়ে, প্রথমে এলীয়র আসা আবশ্যক?’ 11 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘এলীয় আসবেন, আর তিনি সব কিছু পুনঃস্থাপন করবেন৷ 12 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলীয় এসে গেছেন, আর লোকে তাকে চেনেনি৷ লোকেরা তাঁর প্রতি যাচ্ছেতাইব্যবহার করেছে৷ মানবপুত্রকেও তাদের হাতে সেই একই রকম নির্য়াতন ভোগ করতে হবে৷’ 13 তখন তাঁর শিষ্যরা বুঝতে পারলেন য়ে, তিনি তাঁদের বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের কথা বলছেন৷ 14 যীশু যখন লোকদের মাঝে আবার ফিরে এলেন, তখন একজন লোক যীশুর কাছে এসে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বলল, 15 ‘প্রভু আমার ছেলেটিকে দয়া করুন৷ তার মৃগী রোগ হয়েছে, তাতে সে খুবই কষ্ট পাচ্ছে৷ সে প্রায়ই হয় আগুনে, নয় তো জলে পড়ে যায়৷ 16 আমি তাকে আপনার শিষ্যদের কাছে এনেছিলাম, কিন্তু তাঁরা তাকে সুস্থ করতে পারেন নি৷’ 17 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘তোমরা অবিশ্বাসী ও দুষ্ট প্রকৃতির লোক৷ কতকাল আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব? কতকাল আমি তোমাদের বহন করব? ছেলেটিকে আমার কাছে নিয়ে এস৷’ 18 তখন যীশু সেইভূতকে তিরস্কার করলে ভূতটি ছেলেটির মধ্য থেকে বের হয়ে গেল, আর সেই মুহূর্ত্ত থেকেইছেলেটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল৷ 19 পরে শিষ্যরা একান্তে যীশুর কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমরা সেইভুতকে তাড়াতে পারলাম না কেন?’ 20 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমাদের অল্প বিশ্বাসের কারণেইতোমরা তা পারলে না৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ছোট্ট সরষে দানার মতো এতটুকু বিশ্বাসও যদি তোমাদের থাকে, তবে তোমরা যদি এই পাহাড়কে বল, ‘এখান থেকে সরে ওখানে যাও’ তবে তা সরে যাবে৷ তোমাদের পক্ষে কিছুই অসন্ভব হবে না৷’ 21 22 যীশু ও তাঁর শিষ্যেরা একসঙ্গে যখন গালীলে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘মানবপুত্রকে মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ 23 তারা তাঁকে হত্যা করবে; কিন্তু তিন দিনের দিন মানবপুত্র মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন৷’ এতে শিষ্যরা খুবইদুঃখিত হলেন৷ 24 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা কফরনাহূমে গেলে, মন্দিরের জন্য যারা কর আদায় করত তারা পিতরের কাছে এসে বলল, ‘আপনাদের গুরু কি মন্দিরের কর দেন না?’ 25 পিতর বললেন, ‘হ্যাঁ, দেন৷’আর তিনি ঘরে গিয়ে কিছু বলার আগেই যীশু প্রথমে তাঁকে বললেন, ‘শিমোন তোমার কি মনে হয়? এই পৃথিবীর রাজারা কাদের কাছ থেকে নানারকম কর আদায় করে? তারা কি তাদের নিজের সন্তানদের কাছ থেকে কর আদায় করে, না বাইরের লোকেদের কাছ থেকে কর আদায় করে?’ 26 পিতর বললেন, ‘তারা অন্য লোকদের কাছ থেকেই আদায় করে৷’তখন যীশু বললেন, ‘তাহলে তাদের সন্তানদের জন্য ছাড় আছে৷ 27 কিন্তু আমরা য়েন ঐ কর আদায়কারীদের কোনরকম অপমান বোধের কারণ না হই , সেই জন্য তুমি হ্রদে গিয়ে বঁড়শী ফেল আর প্রথমে য়ে মাছটা উঠবে তা নিয়ে এসে সেই মাছটার মুখ খুললে তুমি একটি মুদ্রা পাবে, ওটা দিয়ে আমার ও তোমার দেয় কর মিটিয়ে দিও৷’
1 সেই সময় যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘প্রভু, স্বর্গরাজ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে?’ 2 তখন যীশু একটি শিশুকে ডেকে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে বললেন, 3 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতদিন পর্যন্ত না তোমাদের মনের পরিবর্তন ঘটিয়ে এই শিশুদের মতো হবে, ততদিন তোমরা কখনই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না৷ 4 তাই, য়ে কেউ নিজেকে নত-নম্র করে শিশুর মতো হয়ে ওঠে, সেই স্বর্গরাজ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ৷ 5 ‘আর য়ে কেউ এরকম কোন সামান্য সেবককে আমার নামে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে৷ 6 এই রকম নম্র মানুষদের মধ্যে যাঁরা আমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কারও বিশ্বাসে যদি কেউ বিঘ্ন ঘটায়, তবে তার গলায় ভারী একটা য়াঁতা বেঁধে সমুদ্রের অতল জলে তাকে ডুবিয়ে দেওয়াই তার পক্ষে ভাল হবে৷ 7 ধিক্ এই জগত সংসার! কারণ এখানে কত রকমেরই না প্রলোভনের জিনিস আছে৷ প্রলোভন জগতে থাকবে ঠিকই, কিন্তু ধিক্ সেই মানুষকে যার দ্বারা তা আসে৷ 8 তাই তোমার হাত কিংবা পা যদি তোমার প্রলোভনে পড়ার কারণ স্বরূপ হয়, তবে তা কেটে ফেল৷ দুহাত ও পা নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে পড়ার চেয়ে বরং নূলো বা খোঁড়া হয়ে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করা ভাল৷ 9 তোমার চোখ যদি তোমাকে প্রলোভনের পথে টেনে নিয়ে যায়, তবে তা উপড়ে ফেলে দিও৷ দুচোখ নিয়ে নরকের আগুনে পড়ার চেয়ে বরং কানা হয়ে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভাল৷ 10 ‘দেখো, তোমরা আমার এই নম্র মানুষদের মধ্যে একজনকেও তুচ্ছ করো না, কারণ আমি তোমাদের বলছি য়ে স্বর্গে তাদের স্বর্গদূতেরা সব সময় আমার স্বর্গীয় পিতার মুখের দিকে চেয়ে আছেন৷ 11 12 ‘তোমরা কি মনে কর? যদি কোন লোকের একশোটি ভেড়া থাকে, আর তার মধ্যে যদি একটা ভুল পথে চলে যায় তবে সে কি নিরানব্বইটাকে পাহাড়ের ধারে রেখে দিয়ে সেই হারানো ভেড়াটা খুঁজতে যাবে না? 13 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যখন সে সেইভেড়াটা খুঁজে পায় তখন য়ে নিরানব্বইটা ভুল পথে যায় নি, তাদের চেয়ে য়েটা হারিয়ে গিয়েছিল তাকে ফিরে পেয়ে সে বেশী আনন্দ করে৷ 14 ঠিক সেই ভাবে, তোমাদের পিতা যিনি স্বর্গে আছেন, তিনি চান না, য়ে এই ছোট্টদের মধ্যে একজনও হারিয়ে যায়৷ 15 ‘তোমার ভাই যদি তোমার বিরুদ্ধে কোন অন্যায় করে, তবে তার কাছে একান্তে গিয়ে তার দোষ দেখিয়ে দাও৷ সে যদি তোমার কথা শোনে, তবে তুমি তাকে আবার তোমার ভাই বলে ফিরে পেলে৷ 16 কিন্তু সে যদি তোমার কথা না শোনে, তবে আরো দু-একজনকে সঙ্গে নিয়ে তার কাছে যাও, য়েন ঐ দুজন কিংবা তিনজন সাক্ষীর কথায় প্রত্যেকটা বিষয় সত্য বলে প্রমাণিত হয়৷ 17 সে যদি তাদের কথা শুনতে না চায়, তবে মণ্ডলীতে তা জানাও৷ আর সে যদি মণ্ডলীর কথাও শুনতে না চায়, তবে সে তোমার কাছে বিধর্মী ও কর আদায়কারীর মত হোক৷ 18 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, পৃথিবীতে তোমরা যা বেঁধে রাখবে, স্বর্গেও তা বাঁধা হবে৷ আর পৃথিবীতে তোমরা যা খুলে দেবে স্বর্গেও তা খুলে দেওয়া হবে৷ 19 ‘আমি তোমাদের আবার বলছি, পৃথিবীতে তোমাদের মধ্যে দুজন যদি একমত হয়ে কোন বিষয় নিয়ে প্রার্থনা কর, তবে আমার স্বর্গের পিতা তাদের জন্য তা পূরণ করবেন৷ 20 একথা সত্য, কারণ আমার অনুসারীদের মধ্যে দুজন কিংবা তিনজন য়েখানে আমার নামে সমবেত হয়, সেখানে তাদের মাঝে আমি আছি৷’ 21 তখন পিতর যীশুর কাছে এসে তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আমার ভাই আমার বিরুদ্ধে কতবার অন্যায় করলে আমি তাকে ক্ষমা করব? সাত বার পর্যন্ত করব কি?’ 22 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাকে বলছি, কেবল সাত বার নয়, কিন্তু সাতকে সত্তর দিয়ে গুণ করলে যতবার হয় ততবার৷’ 23 ‘স্বর্গরাজ্য এভাবে তুলনা করা যায়, য়েমন একজন রাজা যিনি তাঁর দাসদের কাছে হিসাব মিটিয়ে দিতে বললেন৷ 24 তিনি যখন হিসাব নিতে শুরু করলেন, তখন তাদের মধ্যে একজন লোককে আনা হল য়ে রাজার কাছে দশ হাজার রৌপ্যমুদ্রা ধারত৷ 25 কিন্তু তার সেই ঋণ শোধ করার ক্ষমতা ছিল না৷ তখন সেইমনিব রাজা হুকুম করলেন য়েন সেইলোকটাকে তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে আর তার যা কিছু আছে সমস্ত বিক্রি করে পাওনা আদায় করা হয়৷ 26 ‘তাতে সেইদাস মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে মনিবের পা ধরে বলল, ‘আমার ওপর ধৈর্য্য ধরুন, আমি আপনার সমস্ত ঋণই শোধ করে দেব’ 27 সেইকথা শুনে সেই দাসের প্রতি মনিবের অনুকম্পা হল, তিনি তার সব ঋণ মকুব করে দিয়ে তাকে মুক্ত করে দিলেন৷ 28 ‘কিন্তু সেইদাস ছাড়া পেয়ে বাইরে গিয়ে তার একজন সহকর্মীর দেখা পেল, য়ে তার কাছে প্রায় একশো মুদ্রা ধারত৷ সেই দাস তখন তার গলাটিপে ধরে বলল, ‘তুই য়ে টাকা ধার করেছিস তা শোধ কর৷’ 29 ‘তখন তার সহকর্মী তার সামনে উপুড় হয়ে অনুনয় করে বলল, ‘আমার প্রতি ধৈর্য্য ধর৷ আমি তোমার সব ঋণ শোধ করে দেব৷’ 30 কিন্তু সে তাতে রাজী হল না, বরং ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটকে রাখল৷ 31 তার অন্য সহকর্মীরা এইঘটনা দেখে খুবইদুঃখ পেল, তাই তারা গিয়ে তাদের মনিবের কাছে যা যা ঘটেছে সব জানাল৷ 32 ‘তখন সেই মনিব তাকে ডেকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট দাস! তুমি আমায় অনুরোধ করলে আর আমি তোমার সব ঋণ মকুব করে দিলাম৷ 33 আমি য়েমন তোমার প্রতি দয়া দেখিয়েছিলাম তেমনি তোমার সহকর্মীর প্রতিও কি তোমার দয়া করা উচিত ছিল না?’ 34 তখন তার মনিব ক্রুদ্ধ হয়ে সমস্ত ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে শাস্তি দিতে কারাগারে দিয়ে দিলেন৷ 35 ‘তোমরা প্রত্যেকে যদি তোমাদের ভাইকে অন্তর দিয়ে ক্ষমা না কর, তবে আমার স্বর্গের পিতাও তোমাদের প্রতি ঠিক ঐভাবে ব্যবহার করবেন৷’
1 এসব কথা বলা শেষ করে যীশু গালীল ছেড়ে যর্দননদীরঅন্য পারেযিহূদিয়া প্রদেশে এলেন৷ 2 বহুলোক তাঁর পিছু পিছু চলতে লাগল আর তিনি সেখানে তাদের সুস্থ করলেন৷ 3 সেই সময় কয়েকজন ফরীশী এসে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে জিজ্ঞেস করল, কোন লোকের পক্ষে তার খুশী মতো য়ে কোন কারণে স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি বিধি-সম্মত?’ 4 যীশু বললেন, ‘তোমরা কি শাস্ত্রে পড়নি, য়ে শুরুতেই ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও নারী করে সৃষ্টি করেছিলেন?’ 5 এরপর ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘এজন্য মানুষ বাবা-মাকে ছেড়ে স্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হবে, আর সেইদুজন এক দেহ হবে৷’ 6 তাইতারা আর দুজন নয় কিন্তু একজন৷ তাইঈশ্বর যাদের যুক্ত করেছেন, মানুষ তাদের পৃথক না করুক৷’ 7 তখন ফরীশীরা তাঁকে বললেন, ‘তবে মোশির বিধানে শুধুমাত্র বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র দিয়ে স্ত্রীকে ত্যাগ করার বিষয়ে লেখা আছে কেন?’ 8 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমাদের অন্তরের কঠোরতার জন্যই মোশি সেই বিধান দিয়েছিলেন, শুরুতে কিন্তু এরকম ছিল না৷ 9 তাইআমি তোমাদের বলছি, যদি কোন মানুষ ব্যভিচার দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তবে সে ব্যভিচার করে৷’ 10 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরিস্থিতি যখন এমনইহয়, তখন বিয়ে না করাইভাল৷’ 11 যীশু তাঁদের বললেন, ‘সবাইএইশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, কেবল যাদের সেই ক্ষমতা দেওযা হয়েছে, তারাইতা মেনে নিতে পারে৷ 12 কিছু লোক নপুংসক হয়েই মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়,যারা বিয়ে করেই না৷ আর কিছু লোককে মানুষে খোজা করে দেয়, সেজন্য তারা বিয়ে করে না৷ আবার এমন কিছু লোক আছে, যাঁরা স্বর্গরাজ্যের জন্য বিয়ে করতে চায় না৷ য়ে কেউ এ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে গ্রহণ করুক৷’ 13 এরপর লোকেরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল, য়েন তিনি তাদের মাথায় হাত রেখে প্রার্থনা করেন৷ কিন্তু যীশুর শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন৷ 14 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাধা দিও না, ওদের আমার কাছে আসতে নিষেধ করো না; এদের মতো লোকদের জন্যইতো স্বর্গরাজ্য৷’ 15 এরপর যীশু সব ছেলেমেয়েদের মাথায় হাত রাখলেন, তারপর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 16 একজন লোক একদিন যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, ‘গুরু অনন্ত জীবন পাবার জন্য আমাকে কোন্ ভাল কাজ করতে হবে?’ 17 যীশু তাকে বললেন, ‘কোনটি ভাল একথা তুমি আমায় জিজ্ঞেস করছ কেন? ভাল তো কেবল একজনই আর তিনি ঈশ্বর৷ যাই হোক তুমি যদি অনন্ত জীবন পেতে চাও, তবে তাঁর সব আজ্ঞা পালন কর৷’ 18 সে বলল, ‘কোন্ কোন্ আজ্ঞা পালন করব?’যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি অবশ্যইনরহত্যা করবে না, ব্যভিচার করবে না, চুরি করবে না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না, 19 তোমার বাবা-মাকে সম্মান করোও প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবেসো৷'" 20 সেই যুবক তখন যীশুকে বলল, ‘আমি তো এর সবইপালন করে আসছি, তাহলে আমার আর কি করা বাকি আছে?’ 21 যীশু তাঁকে বললেন, ‘যদি তুমি সম্পূর্ণ নিখুঁত হতে চাও, তবে যাও, তোমার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও৷ তাতে তুমি স্বর্গে প্রচুর সম্পদ পাবে৷ তারপর এস, আমার অনুসারী হও৷’ 22 কিন্তু সেই যুবক এই কথা শুনে বিষন্ন হয়ে চলে গেল, কারণ তার প্রচুর সম্পত্তি ছিল৷ 23 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ধনী ব্যক্তির পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করা কঠিন হবে৷ 24 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, ধনীর পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং ছুঁচের ফুটো দিয়ে উটের গলে যাওয়া সহজ৷’ 25 একথা শুনে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ তাঁরা তখন বললেন, ‘তাহলে উদ্ধার পাওয়া কার পক্ষে সন্ভব?’ 26 যীশু তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘মানুষের পক্ষে তা অসন্ভব বটে, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে সবই সন্ভব৷’ 27 তখন পিতর বললেন, ‘দেখুন, আমরা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে আপনার অনুসারী হয়েছি, তাহলে আমরা কি পাব?’ 28 যীশু তাঁদের বললেন., ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সেইনতুন জগতে যখন মানবপুত্র তাঁর মহিমামণ্ডিত সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরা যাঁরা আমার অনুসারী হয়েছ, তোমরাও বারোটি সিংহাসনে বসবে আর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর বিচার করবে৷ 29 আর য়ে কেউ আমার জন্য বাড়ি ঘর, ভাই বোন, বাবা-মা, ছেলেমেয়ে অথবা জায়গা জমি ছেড়েছে, সে তার শতগুন বেশী পাবে এবং অনন্ত জীবনেরও অধিকারী হবে৷ 30 কিন্তু এমন অনেকে যাঁরা এখন প্রথমে আছে তারা শেষে যাবে, আর যাঁরা এখন শেষে আছে তারা প্রথম হবে৷
1 ‘স্বর্গরাজ্য এমন একজন জমিদারের মতো, যিনি তাঁর দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করার জন্য ভোরবেলাই মজুর আনতে বেরিয়ে পড়লেন৷ 2 তিনি মজুরদের দিনে একটি রৌপ্যমুদ্রা মজুরী দেবেন বলে ঠিক করে, তাদের তাঁর দ্রাক্ষা ক্ষেতে পাঠিয়ে দিলেন৷ 3 প্রায় নটার সময় তিনি বাড়ির বাইরে গেলেন আর দেখলেন, কিছু লোক বাজারে তখনও কিছু না করে দাঁড়িয়ে আছে৷ 4 তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরাও আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করতে যাও, আমি তোমাদের ন্যায় মজুরী দেব৷’ 5 তখন তারাও দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করতে গেল৷ ‘সেই ব্যক্তি আবার প্রায় বেলা বারোটা ও তিনটার সময় বাড়ির বাইরে গিয়ে ঐ একই রকম ভাবে মজুরদের কাজে পাঠালেন৷ 6 প্রায় পাঁচটার সময় তিনি আবার বাইরে গেলেন ও আরো কিছু লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাদের বললেন, ‘তোমরা সারাদিন কোন কাজ না করে এখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন? 7 ‘তারা তাঁকে বলল, ‘কেউ আমাদের কাজে নেয় নি৷’‘তখন ক্ষেতের মালিক তাদের বললেন, ‘তোমরাও গিয়ে আমার ক্ষেতে কাজে লাগো৷’ 8 ‘দিনের শেষে ক্ষেতের মালিক তাঁর নায়েবকে ডেকে বললেন, ‘মজুরদের সকলকে ডাক ও তাদের মজুরী মিটিয়ে দাও; শেষের জন থেকে শুরু করে প্রথম জন পর্যন্ত সকলকে দাও৷’ 9 ‘বিকেল পাঁচটায় য়ে মজুররা কাজে লেগেছিল, তারা এসে প্রত্যেকে একটা রূপোর টাকা নিয়ে গেল৷ 10 প্রথমে যাদের কাজে লাগানো হয়েছিল, তারা বেশী পাবে বলে আশা করেছিল, কিন্তু তারাও প্রত্যেকে একটা করে রূপোর টাকা পেল৷ 11 তারা তা নিল বটে কিন্তু ক্ষেতের মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলল, 12 যাঁরা শেষে কাজে লেগেছিল তারা মাত্র একঘন্টা কাজ করেছে, আর আপনি তাদের ও আমাদের সমান মজুরী দিলেন; অথচ আমরা কড়া রোদে সারা দিন ধরে কাজ করলাম৷’ 13 ‘এর উত্তরে তিনি তাদের একজনকে বললেন, ‘বন্ধু, আমি তো তোমার সঙ্গে কোন অন্যায় ব্যবহার করিনি৷ তুমি কি এক টাকা মজুরীতে কাজ করতে রাজী হও নি? 14 তোমার যা পাওনা তা নিয়ে বাড়ি যাও৷ আমার ইচ্ছা, আমি তোমাকে যা দিয়েছি, এই শেষের জনকেও তাই দেব৷ 15 যা আমার নিজের, তা আমার খুশীমতো ব্যবহার করার অধিকার কি আমার নেই ? আমি দয়ালু, এই জন্য কি তোমার ঈর্ষা হচ্ছে?’ 16 ‘ঠিক এই রকম যাঁরা শেষের তারা প্রথম হবে, আর যাঁরা প্রথম, তারা শেষে পড়ে যাবে৷’ 17 এরপর যীশু জেরুশালেমের দিকে যাত্রা করলেন৷ সঙ্গে তাঁর বারোজন শিষ্যও ছিলেন, পথে তিনি তাঁদের একান্তে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, 18 ‘শোন, আমরা এখন জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছি৷ সেখানে মানবপুত্রকে প্রধান যাজকদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের হাতে সঁপে দেওয়া হবে, তারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবে৷ 19 তারা তাঁকে বিদ্রূপ করবার জন্য, বেত মারবার ও ক্রুশে দেবার জন্য অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে৷ কিন্তু মৃত্যুর তিন দিনের মাথায় তিনি জীবিত হয়ে উঠবেন৷’ 20 পরে সিবদিয়ের ছেলেদের মা তার দুই ছেলেকে নিয়ে যীশুর কাছে এসে তাঁকে প্রণাম করে বললেন, আমার জন্য কিছু করুন৷ 21 যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি কি চাও?’তিনি বললেন, ‘আপনি আমায় এই প্রতিশ্রুতি দিন য়েন আপনার রাজ্যে আমার এইদুই ছেলে একজন আপনার ডানপাশে আর একজন বাঁ পাশে বসতে পায়৷’ 22 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘তোমরা কি চাইছ তা তোমরা জান না৷ আমি য়ে দুঃখের পেয়ালায় পান করতে যাচ্ছি তাতে কি তোমরা পান করতে পার?’ছেলেরা তাঁকে বলল, ‘হ্যাঁ, পারি!’ 23 তিনি তাদের বললেন, ‘বাস্তবিক, তোমরা আমার পেয়ালায় পান করবে; কিন্তু আমার ডানদিকে বা বাঁদিকে বসতে দেবার অধিকার আমার নেই৷ আমার পিতা যাদের জন্য তা ঠিক করে রেখেছেন, তারাই তা পাবে৷’ 24 বাকি দশজন শিষ্য এই কথা শুনে ঐ দুই ভাইয়ের ওপর রেগে গেলেন৷ 25 তখন যীশু তাঁদের নিজের কাছে ডেকে বললেন, ‘তোমরা একথা জান য়ে, অইহুদীদের শাসনকর্তারাই তাদের প্রভু, আর তাদের মধ্যে যাঁরা প্রধান তারা তাদের ওপর হুকুম চালায়৷ 26 কিন্তু তোমাদের মধ্যে সেরকম হওয়া উচিত নয়৷ তোমাদের মধ্যে য়ে বড় হতে চায়, তাকে তোমাদের সেবক হতে হবে৷ 27 আর তোমাদের মধ্যে য়ে শ্রেষ্ঠ স্থান লাভ করতে চায়, সে য়েন তোমাদের দাস হয়৷ 28 মনে রেখো, তোমাদের মানবপুত্রের মতো হতে হবে, যিনি সেবা পেতে নয় বরং সেবা করতে এসেছেন, আর অনেক লোকের মুক্তির মূল্য হিসাবে নিজের প্রাণ উত্সর্গ করতে এসেছেন৷’ 29 তাঁরা যখন যিরীহো শহর ছেড়ে যাচ্ছিলেন, তখন বহু লোক যীশুর পিছু পিছু চলল৷ 30 সেখানে পথের ধারে দুজন অন্ধ বসেছিল৷ যীশু সেই পথ দিয়ে যাচ্ছেন শুনে তারা চিত্কার করে বলল, ‘প্রভু, দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন৷’ 31 লোকেরা তাদের ধমক দিয়ে চুপ করতে বলল৷ কিন্তু তারা আরো চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘প্রভু দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন!’ 32 তখন যীশু দাঁড়ালেন আর তাদের ডেকে বললেন, ‘তোমরা কি চাও? আমি তোমাদের জন্য কি করব?’ 33 তারা বলল, ‘প্রভু আমরা য়েন দেখতে পাই৷’ 34 তখন তাদের প্রতি যীশুর করুণা হল৷ তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করলেন, আর তখনইতারা দৃষ্টি ফিরে পেল ও তাঁর পেছনে পেছনে চলল৷
1 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জেরুশালেমের কাছাকাছিজৈতুন পর্বতমালার ধারে অবস্থিত বৈত্ফগী গ্রামের ধারে এসে পৌঁছালেন৷ 2 তিনি তাঁর দুজন শিষ্যকে এইবলে পাঠালেন, ‘তোমরা ঐ সামনের গ্রামে যাও৷ সেখানে দেখবে একটা গাধা বাঁধা আছে আর একটা বাচ্চাও তার সাথে আছে৷ তাদের খুলে আমার কাছে নিয়ে এস৷ 3 কেউ যদি তোমাদের কিছু জিজ্ঞেস করে, তবে তাকে বোলো, ‘প্রভুএদের চান৷ তিনি পরে তাদের ফেরত দেবেন৷’ 4 এমনটি হল য়েন এর দ্বারা ভাববাদীর ভাববাণী পূর্ণ হয়: 5 ‘সিযোন নগরীকে বল, ‘দেখ তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন৷ তিনি নম্র, তিনি গাধার ওপরে, একটি ভারবাহী গাধার বাচ্চার ওপরে চড়ে আসছেন৷'" সখরিয় 9:9 6 যীশু য়েমন বলেছিলেন তাঁর শিষ্যেরা গিয়ে তেমনি করলেন৷ 7 তারা সেই গাধা ও গাধার বাচ্চাটা এনে তাদের ওপর নিজেদের গায়ের কাপড় বিছিয়ে দিলে যীশু তাদের উপর বসলেন৷ 8 লোকদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের জামা খুলে পথে বিছিয়ে দিল, আবার অনেকে গাছের ডাল কেটে নিয়ে পথের ওপরে বিছিয়ে দিল৷ 9 যাঁরা যীশুর সামনে ও পিছনে ভীড় করে যাচ্ছিল, তারা চিত্কার করে বলতে লাগল,‘দায়ূদের পুত্রের প্রশংসা হোক৷ যিনি প্রভুর নামে আসছেন, তিনি ধন্য! স্বর্গে ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্৷’গীতসংহিতা 118:25-26 10 যীশু যখন জেরুশালেমে প্রবেশ করলেন, তখন সমস্ত শহরে খুব শোরগোল পড়ে গেল৷ লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, ‘ইনি কে?’ 11 জনতা বলে উঠল, ‘ইনি যীশু, গালীলের নাসরতীয় শহরের সেই ভাববাদী৷’ 12 এরপর যীশু মন্দির চত্বরে ঢুকলেন; আর যাঁরা সেই মন্দির চত্বরের মধ্যে বেচাকেনা করছিল, তাদের তাড়িয়ে দিলেন৷ যাঁরা টাকা বদল করে দেবার জন্য টেবিল সাজিয়ে বসেছিল ও যাঁরা ডালায় করে পায়রা বিক্রি করছিল তিনি তাদের টেবিল ও ডালা উল্টে দিলেন৷ 13 যীশু তাদের বললেন, ‘শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমার গৃহ হবে প্রার্থনা গৃহ৷’কিন্তু তোমরা তা দস্যুদের আস্তানায় পরিণত করেছ৷'" 14 এরপর মন্দির চত্বরের মধ্যে অনেক অন্ধ ও খঞ্জ যীশুর কাছে এলে তিনি তাদের সুস্থ করলেন৷ 15 প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা দেখলেন য়ে, যীশু অনেক অলৌকিক কাজ করছেন, আর যখন দেখলেন মন্দির চত্বরের মধ্যে ছেলেমেয়েরা চিত্কার করে বলছে, ‘প্রশংসা, দায়ূদের পুত্রের প্রশংসা হোক্,’ তখন তাঁরা রেগে গেলেন৷ 16 তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘ওরা যা বলছে, তা কি তুমি শুনতে পাচ্ছ?’যীশু তাদের জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, পাচ্ছি, তোমরা কি শাস্ত্রে পড় নি? ‘তুমি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরই প্রশংসা করতে শিখিয়েছ৷'" 17 এরপর যীশু তাদের ছেড়ে শহরের বাইরে বৈথনিয়ায় গিয়ে রাতে সেখানেই থাকলেন৷ 18 পরদিন সকালে তিনি যখন জেরুশালেমে ফিরছিলেন, সেই সময় যীশুর খিদে পেল৷ 19 তিনি পথের ধারে একটি ডুমুর গাছ দেখতে পেয়ে সেই গাছটার কাছে গেলেন৷ কিন্তু পাতা ছাড়া তাতে কিছু দেখতে পেলেন না৷ তখন তিনি সেই গাছটিকে বললেন, ‘তোমাতে আর কখনও ফল হবে না৷’ আর সেইডুমুর গাছটি শুকিয়ে গেল৷ 20 এই ঘটনা দেখে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘এই ডুমুর গাছটা এত তাড়াতাড়ি কেমন করে শুকিয়ে গেল?’ 21 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের যদি ঈশ্বরের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে, যদি সন্দেহ না কর, তবে ডুমুর গাছের প্রতি আমি যা করেছি, তোমরাও তা করতে পারবে৷ শুধু তাই নয়, তোমরা যদি ঐ পাহাড়কে বল, ‘ওঠ, ঐ সাগরে গিয়ে আছড়ে পড়’ দেখবে তাই হবে৷ 22 যদি বিশ্বাস থাকে, তবে প্রার্থনায় তোমরা যা চাইবে তা পাবে৷’ 23 যীশু যখন আবার মন্দির চত্বরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘তুমি কোন অধিকারে এসব করছ? এই অধিকার তোমায় কে দিয়েছে?’ 24 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করতে চাই, আর তোমরা যদি তার উত্তর দাও তাহলে আমিও তোমাদের বলব আমি কোন অধিকারে এসব করছি৷ 25 আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার য়োহন কোথা থেকে পেয়েছিলেন? তা কি ঈশ্বরের কাছ থেকে, না মানুষের কাছ থেকে এসেছিল?’তখন তারা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করে বলল, ‘আমরা যদি বলি, ঈশ্বরের কাছ থেকে, তাহলে ও আমাদের বলবে, ‘তবে তোমরা কেন তাকে বিশ্বাস কর নি?’ 26 কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তবে জনসাধারণের কাছ থেকে ভয় আছে, কারণ লোকেরা য়োহনকে ভাববাদী বলে মানে৷’ 27 তাই এর উত্তরে তারা যীশুকে বললেন, ‘আমরা জানি না৷’তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তবে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি৷ 28 তারপর যীশু বললেন, ‘আচ্ছা, এবিষয়ে তোমরা কি বলবে? একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল৷ সে তার বড় ছেলের কাছে গিয়ে বলল, ‘বাছা, আজ তুমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতে গিয়ে কাজ কর৷’ 29 ‘কিন্তু তার ছেলে বলল, ‘আমি য়েতে চাইনা৷’ কিন্তু পরে সে তার মত বদলিয়ে কাজে গেল৷ 30 ‘এরপর লোকটি তার অপর ছেলের কাছে গিয়ে তাকেও সেই একইকথা বলল৷ এর উত্তরে অন্য ছেলেটি বলল, ‘হ্যাঁ, মহাশয় যাচ্ছি৷’ কিন্তু সে গেল না৷ 31 ‘এই দুজনের মধ্যে কে তার বাবার ইচ্ছা পালন করল? তারা বললেন, ‘বড় ছেলে৷’যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কর-আদায়কারীরা ও বেশ্যারা,. তোমাদের আগে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করছে৷ 32 আমি একথা বলছি কারণ জীবনের সঠিক পথ দেখাবার জন্য য়োহন তোমাদের কাছে এসেছিলেন আর তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করনি৷ কিন্তু কর-আদায়কারী ও বেশ্যারা তাকে বিশ্বাস করেছে৷ এসব দেখেও তোমরা মন পরিবর্তন করনি ও তাঁর প্রতি বিশ্বাস করনি৷ 33 ‘আর একটি দৃষ্টান্ত শোন! এক জমিদার একটি দ্রাক্ষা ক্ষেত তৈরী করে তার চারদিকে বেড়া দিলেন৷ পরে সেই ক্ষেতের মধ্যে দ্রাক্ষা মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন৷ পাহারা দেবার জন্য একটা উঁচু পাহারা ঘর তৈরী করলেন৷ পরে কয়েকজন চাষীর কাছে সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত ইজারা দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন৷ 34 যখন দ্রাক্ষা তোলার সময় হল, তখন তিনি তাঁর ভাগ নিয়ে আসবার জন্য তাঁর ক্রীতদাসদের সেই চাষীদের কাছে পাঠালেন৷ 35 ‘কিন্তু চাষীরা তাঁর দাসদের একজনকে মারল, একজনকে খুন করল আর তৃতীয়জনকে পাথর ছুঁড়ে খুন করল৷ 36 এরপর তিনি প্রথম বারের চেয়ে আরো বেশী দাস সেখানে পাঠালেন, আর সেইচাষীরা ঐ দাসদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করল৷ 37 পরে তিনি তাঁর নিজের ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন; তিনি ভাবলেন, ‘ওরা নিশ্চয়ই ওঁর ছেলেকে মান্য করবে৷ 38 ‘কিন্তু চাষীরা যখন দেখল য়ে মালিকের ছেলে আসছে, তখন তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে বলল, ‘দেখ, এই হচ্ছে আইনসম্মত উত্তরাধিকারী, এস, একে আমরা খুন করি, তাহলে আমরাইতার সম্পত্তির মালিক হয়ে যাব৷’ 39 তখন তারা সেই ছেলেকে ধরে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল ও তাকে হত্যা করল৷ 40 এক্ষেত্রে দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক যখন ফিরে আসবেন, তখন ঐ চাষীদের তিনি কি করবেন, তোমরা কি বল?’ 41 ইহুদী যাজকরা যীশুকে বললেন, ‘তারা দুষ্ট লোক বলে তিনি তাদের নির্মমভাবে ধ্বংস করবেন ও সেইদ্রাক্ষা ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবেন, যাঁরা ফলের মরশুমে তাঁকে তাঁর প্রাপ্য অংশ দেবে৷’ 42 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কি শাস্ত্রের এই অংশ পড় নি:‘রাজমিস্ত্রিরা য়ে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল, সেই পাথরটাই হয়ে উঠেছে কোণের প্রধান পাথর৷ এটা প্রভুরইকাজ, এটা আমাদের চোখে আশ্চর্য লাগে৷’গীতসংহিতা 118:22-23 43 ‘অতএব, আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওযা হবে, আর এমন লোকদের দেওয়া হবে, যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত ব্যবহার করবে৷ 44 আর ঐ য়ে পাথর তার ওপরে য়ে পড়বে সে ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, আর সেই পাথর যার ওপরে পড়বে তাকে গুঁড়িয়ে ধূলিসাত্ করবে৷’ 45 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা যীশুর দেওয়া এই দৃষ্টান্তগুলি শুনে বুঝতে পারলেন যীশু তাদেরই বিষয়ে এই কথাগুলি বললেন৷ 46 তাই তাঁরা যীশুকে গ্রেপ্তার করাতে চাইলেন, কিন্তু জনসাধারণের ভয়ে তা করলেন না, কারণ সাধারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মনে করত৷
1 দৃষ্টান্তের মাধ্যমে যীশু আবার তাদের বলতেশুরু করলেন৷ 2 তিনি বললেন, “স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে এইতুলনা দেওয়া য়েতে পারে, একজন রাজা যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ প্রস্তুত করলেন৷ 3 সেইভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকবার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু তারা আসতে চাইল না৷ 4 ‘রাজা আবার তাঁর অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, ‘যাঁরা নিমন্ত্রিত তাদের সকলকে বল৷ দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত, আমার বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট বাছুরগুলো সব মারা হয়েছে, আর সব কিছুই প্রস্তুত৷ তোমরা বিবাহ ভোজে য়োগ দিতে এস৷’ 5 ‘কিন্তু নিমন্ত্রিত লোকেরা তাদের কথায় কান না দিয়ে য়ে যার কাজে চলে গেল৷ কেউ বা তার ক্ষেতের কাজে গেল, আবার কেউ গেল তার ব্যবসার কাজে৷ 6 অন্যরা রাজার সেই দাসদের ধরে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করল ও তাদের খুন করল৷ 7 এতে রাজা খুব রেগে গেলেন, তিনি তাঁর সৈন্য পাঠিয়ে সেইখুনীদের মেরে ফেললেন, সৈন্যরা তাদের শহরটিও পুড়িয়ে দিল৷ 8 ‘এরপর রাজা তাঁর দাসদের বললেন, ‘বিয়ের ভোজ প্রস্তুত কিন্তু যাঁরা নিমন্ত্রিত হয়েছিল তারা তার য়োগ্য ছিল না৷ 9 তাইতোমরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে যাও আর যত লোকের দেখা পাও, তাদের সকলকে এই ভোজে য়োগ দেবার জন্য ডেকে আনো৷ 10 তখন সেই দাসরা রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে ভাল ও মন্দ যাদের পেল তাদের সকলকে ডেকে আনল৷ তাতে বিয়ে বাড়ির ভোজের ঘর অতিথিতে ভরে গেল৷ 11 ‘কিন্তু রাজা অতিথিদের সঙ্গে দেখা করতে এসে সেখানে একজন লোককে দেখতে পেলেন য়ে বিয়ে বাড়ির পোশাক পরে আসে নি৷ 12 রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বন্ধু, বিয়ে বাড়ির উপযুক্ত পোশাক ছাড়াই তুমি কেমন করে এখানে এলে?’ কিন্তু সে চুপ করে থাকল৷ 13 তখন রাজা তাঁর পরিচারকদের বললেন, ‘এর হাত পা বেঁধে একে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও, য়েখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে৷’ 14 ‘কারণ অনেকেই আহুত, কিন্তু অল্পই মনোনীত৷’ 15 তখন ফরীশীরা সেখান থেকে চলে গেল, আর কেমন করে যীশুকে তাঁর কথার ফাঁদে ফেলা যায় সেই পরিকল্পনা করল৷ 16 তারা হেরোদীয়দের কয়েকজনের সঙ্গে নিজেদের কয়েকজন অনুগামীকে যীশুর কাছে পাঠাল৷ এইলোকেরা এসে বলল, ‘গুরু, আমরা জানি আপনি একজন সত্ লোক৷ ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সঠিক ভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকেন৷ আর কে কি বলে তার ধার ধারেন না কারণ লোকে কি ভাববে তাতে আপনার কিছু যায় আসে না৷ 17 তাহলে আপনার কি মত, কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না?’ 18 যীশু তাদের বদ মতলব বুঝতে পেরে বললেন, ‘ভণ্ডের দল আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছ কেন? 19 য়ে টাকায় কর দেওয়া হয় তা আমাকে দেখাও৷’ তারা একটা রূপোর টাকা তাঁর কাছে নিয়ে এল৷ 20 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘এর ওপরে এইমূর্তি ও নাম কার?’ 21 তারা বলল, ‘রোম সম্রাট কৈসরের৷’তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তবে যা কৈসরের তা কৈসরকে দাও, আর যা ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দাও৷’ 22 তারা এইজবাব শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল, তাঁকে আর বিরক্ত না করে সেখান থেকে চলে গেল৷ 23 যাঁরা বলে পুনরুত্থান নেই, সেই সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কিছু লোক সেই দিন যীশুর কাছে এসে তাঁকে একটি প্রশ্ন করলেন৷ 24 তাঁরা বললেন, ‘গুরু, মোশি বলেছেন যদি কোন লোক নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়, তবে তার নিকটতম আত্মীয়রূপে তার ভাইসেই বিধবাকে বিয়ে করবে ও তার ভাইয়ের হয়ে তার বংশ উত্পন্ন করবে৷ 25 আমাদের জানা এক পরিবারে সাত ভাই ছিল৷ প্রথম জন বিয়ে করল, তারপরে সে মারা গেল৷ আর তার কোন সন্তান না থাকাতে, তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করল৷ 26 এইঅবস্থা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সপ্তম জন পর্যন্ত হল, তারা সেই স্ত্রীকে বিয়ে করল ও মারা গেল৷ 27 শেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল৷ 28 এখন আমাদের প্রশ্ন হল, পুনরুত্থানের সময় ঐ সাত ভাইয়ের মধ্যে সেই স্ত্রী কার হবে, সকলেইতো তাকে বিয়ে করেছিল?’ 29 ‘এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা ভুল করছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের পরাক্রম৷ 30 জেনে রাখো, পুনরুত্থানের পর লোকেরা বিয়ে করে না, বা তাদের বিয়েও দেওয়া হয় না, তারা বরং স্বর্গদূতদের মতো থাকে৷ 31 মৃতদের জীবিত হয়ে ওঠার বিষয়ে তোমাদের ভালোর জন্য ঈশ্বর নিজে য়ে কথা বলেছেন, তা কি তোমরা পড়নি? 32 তিনি বলেছেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর৷’ঈশ্বর মৃতদের ঈশ্বর নন, কিন্তু জীবিতদেরই ঈশ্বর৷ 33 সমবেত লোকেরা তাঁর এই শিক্ষা শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 34 ফরীশীরা যখন শুনলেন য়ে যীশুর জবাবে সদ্দূকীরা নিরুত্তর হয়ে গেছেন তখন তাঁরা দল বেঁধে যীশুর কাছে এলেন৷ 35 তাঁদের মধ্যে একজন শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত যীশুকে ফাঁদে ফেলবার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন, 36 ‘গুরু, বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে মহান আদেশ কোনটি?’ 37 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তোমার সমস্ত অন্তর ও তোমার সমস্ত প্রাণ ও মন দিয়ে তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসবে৷’ 38 এটিই হচ্ছে সর্বপ্রথম ও মহান আদেশ৷ 39 আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে এরই অনুরূপ, ‘তুমি নিজেকে য়েমন ভালবাস, তেমনি তোমার প্রতিবেশীকেও ভালবাসবে৷’ 40 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থা ভাববাদীদের সমস্ত শিক্ষা, এই দুটি আদেশের উপর নির্ভর করে৷’ 41 ফরীশীরা তখনও সেখানে সমবেত ছিলেন, সেই সময় যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, 42 ‘খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমরা কি মনে কর? তিনি কার বংশধর?’তারা বললেন, ‘তিনি দায়ূদের পুত্র৷’ 43 যীশু তাদের বললেন, ‘তবে দায়ূদ কিভাবে পবিত্র আত্মার অনুপ্রেরণায় তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন? তিনি বলেছিলেন, 44 ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, যতক্ষন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের নীচে রাখি ততক্ষণ তুমি আমার ডান দিকে বস ও শাসন কর৷’ গীতসংহিতা 110:1 45 তাহলে, দায়ূদ যখন তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন, তখন তিনি কেমন করে তাঁর সন্তান হতে পারেন?’ 46 কিন্তু এর উত্তরে কেউ একটি কথাও তাঁকে বলতে পারলেন না, আর সেই দিন থেকে কেউ তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করতেও সাহস করলেন না৷
1 এরপর যীশু লোকদের ও তাঁর শিষ্যদের বললেন, 2 ‘মোশির বিধি-ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দেবার অধিকার ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের আছে৷ 3 তাই তারা যা যা বলে, তা তোমরা করো এবং মেনে চলো: কিন্তু তারা যা করে তোমরা তা করো না৷ আমি একথা বলছি, কারণ তারা যা বলে তারা তা করে না৷ 4 তারা ভারী ভারী বোঝা যা বওয়া কঠিন, তা লোকদের কাঁধে চাপিয়ে দেয়; কিন্তু সেগুলো সরাবার জন্য নিজেরা একটা আঙ্গুলও নাড়াতে চায় না৷ 5 ‘তারা যা কিছু করে সবই লোক দেখানোর জন্য৷ তারা শাস্ত্রের পদ লেখা তাবিজ বড় করে তৈরী করে, আর নিজেদের ধার্মিক দেখাবার জন্য পোশাকের প্রান্তে লম্বা লম্বা ঝালর লাগায়৷ 6 তারা ভোজসভায় সম্মানের জায়গায় এবং সমাজ-গৃহে গুরুত্বপূর্ণ আসনে বসতে ভালবাসে৷ 7 তারা হাটে-বাজারে লোকদের কাছ থেকে সম্মানসূচক অভিবাদন ও ‘গুরু’ ডাক শুনতে খুবইভালবাসে৷ 8 ‘কিন্তু তোমরা দেখো, লোকে য়েন তোমাদের ‘শিক্ষক’ বলে না ডাকে, কারণ একজনই তোমাদের শিক্ষক, আর তোমরা সকলে পরস্পর ভাই বোন৷ 9 এই পৃথিবীতে কাউকে ‘পিতা’ বলে ডেকো না, কারণ তোমাদের পিতা একজনই, তিনি স্বর্গে থাকেন৷ 10 কেউ য়েন তোমাদের ‘আচার্য্য় বলে না ডাকে, কারণ তোমাদের আচার্য়্য় একজনই, তিনি খ্রীষ্ট৷ 11 তোমাদের মধ্যে য়ে সব থেকে শ্রেষ্ঠ, সে তোমাদের সেবক হবে৷ 12 য়ে কেউ নিজেকে বড় করে, তাকে নত করা হবে৷ আর য়ে কেউ নিজেকে নত করে, তাকে উন্নত করা হবে৷ 13 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা লোকদের জন্য স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে রাখছ, নিজেরাও তাতে প্রবেশ করো না, আর যাঁরা প্রবেশ করতে চেষ্টা করছে তাদেরও প্রবেশ করতে দিচ্ছ না৷ 14 ৷ 15 ‘ধিক ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! একজন লোককে নিজেদের ধর্মমতে নিয়ে আসার জন্য তোমরা জলে স্থলে ঘুরে বেড়াও৷ আর সে যখন তোমাদের ধর্মে আসে, তখন তোমরা নিজেদের চেয়ে তাকে দ্বিগুণ নরকের উপযুক্ত করে তোল৷ 16 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমর ভণ্ড! তোমরা নিজেরা অন্ধ অথচ অন্যদের পথ দেখাও৷ তোরা বলে থাক, ‘কেউ যদি মন্দিরের দিব্যি দেয়, তবে তাতে কিছু এসে যায় না৷ কিন্তু কেউ যদি মন্দিরের সোনার দিব্যি দেয়, তবে সে সেইশপথে বাঁধা পড়ল; তাকে অবশ্যইতা পূরণ করতে হবে৷’ 17 মূর্খ অন্ধের দল! কোনটা শ্রেষ্ঠ, মন্দিরের সোনা অথবা মন্দির, যা সেই সোনাকে পবিত্র করে? 18 তোমরা আবার একথাও বলে থাক, ‘কেউ যদি যজ্ঞবেদীর নামে শপথ করে, তাহলে সেইশপথ রক্ষা করার জন্য তার কোন বাধ্যবাধকতা নেই ৷ কিন্তু কেউ যদি যজ্ঞবেদীর ওপর য়ে নৈবেদ্য থাকে তার নামে শপথ করে, তবে তার শপথ রক্ষা করার জন্য সে দায়বদ্ধ রইল৷’ 19 তোমরা অন্ধের দল! কোনটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ, যজ্ঞবেদীতে নৈবেদ্য অথবা বেদী, যা তার ওপরের নৈবেদ্যকে পবিত্র করে? 20 তাই যখন কেউ যজ্ঞবেদীর নামে শপথ করে, তখন সে যজ্ঞবেদীর ওপর যা কিছু থাকে সে সব কিছুরইবিষয়ে শপথ করে৷ 21 আর কেউ যখন মন্দিরের নামে শপথ করে, তখন সে জায়গা ও তার মধ্যে যিনি থাকেন, তাঁর নামেও শপথ করে৷ 22 আর যদি কোন লোক স্বর্গের নামে শপথ করে, তখন সে ঈশ্বরের সিংহাসন ও যিনি সেই সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর নামেও শপথ করে৷ 23 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা পুদিনা, মৌরী ও জিরার দশভাগের একভাগ ঈশ্বরকে দিয়ে থাক অথচ ন্যায়, দযা ও বিশ্বস্ততা, ব্যবস্থার এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা অবহেলা করে থাক৷ আগের ঐ বিষয়গুলি পালন করার সঙ্গে সঙ্গে পরের এই বিষয়গুলি পালন করাও তোমাদের উচিত৷ 24 তোমরা অন্ধ পথপ্রদর্শক, তোমরা মশা ছেঁকে ফেল, কিন্তু উট গিলে থাক৷ 25 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা থালা বাটির বাইরেটা পরিষ্কার করে থাক, কিন্তু ভেতরটা থাকে লোভ ও আত্মতোষণে ভরা৷ 26 অন্ধ ফরীশী! প্রথমে তোমাদের পেয়ালার ভেতরটা পরিষ্কার কর, তাহলে গোটা পেয়ালার ভেতরে ও বাইরে উভয় দিকই পরিষ্কার হবে৷ 27 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা চুনকাম করা কবরের মতো, যার বাইরেটা দেখতে খুব সুন্দর, কিন্তু ভেতরে মরা মানুষের হাড়গোড় ও সব রকমের পচা জিনিস রয়েছে৷ 28 তোমরা ঠিক সেইরকম, বাইরের লোকদের চোখে ধার্মিক, কিন্তু ভেতরে ভণ্ডামী ও দুষ্টতায় পূর্ণ৷ 29 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা ভাববাদীদের জন্য স্মৃতিসৌধ গাঁথ ও ঈশ্বর ভক্ত লোকদের কবর সাজাও, 30 আর বলে থাক, ‘আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষদের সময়ে থাকতাম, তবে ভাববাদীদেব হত্যা করার জন্য তাদের সাহায্য করতাম না৷’ 31 এতে তোমরা নিজেদের বিষয়েই সাক্ষ্য দিচ্ছ য়ে, ভাববাদীদের যাঁরা হত্যা করেছিল তোমরা তাদেরই বংশধর৷ 32 তাহলে যাও তোমাদের পূর্বপুরুষেরা যা শুরু করে গেছে তোমরা তার বাকি কাজ শেষ করো৷ 33 সাপ, বিষধর সাপের বংশধর! কি করে তোমরা ঈশ্বরের হাত থেকে রক্ষা পাবে? তোমরা দোষী প্রমাণিত হবে ও নরকে যাবে৷ 34 তাই আমি তোমাদের বলছি, আমি তোমাদের কাছে য়ে ভাববাদী, জ্ঞানীলোক ও শিক্ষকদের পাঠাচ্ছি তোমরা তাদের কারো কারোকে হত্যা করবে, আর কাউকে বা ক্রুশে দেবে, কাউকে বা তোমরা সমাজ-গৃহে চাবুক মারবে৷ এক শহর থেকে অন্য শহরে তোমরা তাদের তাড়া করে ফিরবে৷ 35 এই ভাবে নির্দোষ হেবলের রক্তপাত থেকে শুরু করে বরখায়ার পুত্র সখরিয়, যাকে তোমরা মন্দিরের পবিত্র স্থান ও যজ্ঞবেদীর মাঝখানে হত্যা করেছিলে, সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত যত নির্দোষ ব্যক্তির রক্ত মাটিতে ঝরে পড়েছে, সেই সমস্তের দায় তোমাদের ওপরে পড়বে৷ 36 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই যুগের লোকদের ওপর ঐ সবের শাস্তি এসে পড়বে৷’ 37 ‘হায় জেরুশালেম, জেরুশালেম! তুমি, তুমিই ভাববাদীদের হত্যা করে থাক, আর তোমার কাছে ঈশ্বর যাদের পাঠান তাদের পাথর মেরে থাক৷ মুরগী য়েমন তার বাচ্চাদের ডানার নীচে জড়ো করে, তেমনি আমি তোমার লোকদের কতবার আমার কাছে জড়ো করতে চেয়েছি, কিন্তু তোমরা রাজী হও নি৷ 38 এখন তোমাদের মন্দির পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকবে৷ 39 বাস্তবিক, আমি তোমাদের বলছি, য়ে পর্যন্ত না তোমরা বলবে, ‘ধন্য, তিনি যিনি প্রভুর নামে আসছেন, সে পর্যন্ত তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না৷
1 যীশু মন্দির থেকে যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন, সেইসময়তাঁর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে মন্দিরের বড় বড় দালানের দিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেন৷ 2 এর জবাবে যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা এখন এখানে এসব দেখছ, কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে একটা পাথর আর একটা পাথরের ওপর থাকবে না, এসবই ভুমিস্যাত্ হবে৷’ 3 যীশু যখন জৈতুন পর্বতমালার ওপর বসেছিলেন, তখন তাঁর শিষ্যরা একান্তে তাঁর কাছে এসে তাঁকে বললেন, ‘আমাদের বলুন, কখন এসব ঘটবে, আর আপনার আসার এবং এযুগের শেষ পরিণতির সময় জানার চিহ্নই বা কি হবে?’ 4 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘দেখো! কেউ য়েন তোমাদের না ঠকায়৷ 5 আমি তোমাদের একথা বলছি কারণ অনেকে আমার নামে আসবে আর তারা বলবে, ‘আমি খ্রীষ্ট৷’ আর তারা অনেক লোককে ঠকাবে৷ 6 তোমরা নানা যুদ্ধের কথা শুনবে এবং তোমাদের কানে যুদ্ধের গুজব আসেব৷ কিন্তু দেখো, তোমরা ভয় পেও না, কারণ ঐ সব ঘটনা অবশ্যই ঘটবে কিন্তু তখনও শেষ নয়৷ 7 হ্যাঁ, এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে লড়াইকরবে; আর এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যাবে৷ সর্বত্র দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হবে৷ 8 কিন্তু এসব কেবল যন্ত্রণার আরন্ভ মাত্র৷ 9 ‘সেই সময় শাস্তি দেবার জন্য তারা তোমাদের ধরিয়ে দেবে ও হত্যা করবে৷ আমার শিষ্য হয়েছ বলে জগতের সকল জাতির লোকেরা তোমাদের ঘৃণা করবে৷ 10 সেই সময় অনেক লোক বিশ্বাস থেকে সরে যাবে৷ তারা একে অপরকে শাসনকর্তাদের হাতে ধরিয়ে দেবে আর তারা পরস্পরকে ঘৃণা করবে৷ 11 অনেক ভণ্ড ভাববাদীর আবির্ভাব হবে, যাঁরা বহু লোককে ঠকাবে৷ 12 অধর্ম বেড়ে যাওযার ফলে অধিকাংশ লোকদের মধ্য থেকে ভালবাসা কমে যাবে৷ 13 কিন্তু শেষ পর্যন্ত য়ে নিজেকে স্থির রাখবে, সে রক্ষা পাবে৷ 14 আর রাজ্যের (স্বর্গ) এইসুসমাচার জগতের সর্বত্র প্রচার করা হবে৷ সমস্ত জাতির কাছে তা সাক্ষ্যরূপে প্রচারিত হবে, আর তারপরই উপস্থিত হবে সেই সময়৷ 15 ‘তোমরা তখন দেখবে য়ে, ভাববাদী দানিয়েলের মধ্য দিয়ে য়ে ‘সর্বনাশা ঘৃণার বস্তুর’কথা বলা হয়েছিল তা পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে আছে৷’ য়ে একথা পড়ছে সে বুঝুক এর অর্থ কি৷ 16 ‘সেই সময় যাঁরা যিহূদিয়াতে থাকবে, তারা পাহাড় অঞ্চলে পালিয়ে যাক্৷ 17 য়ে ছাদে থাকবে, সে য়েন ঘর থেকে তার জিনিস নেবার জন্য নীচে না নামে৷ 18 ক্ষেতের মধ্যে য়ে কাজ করবে, সে তার জামা নেবার জন্য ফিরে না আসুক৷ 19 হায়! সেই মহিলারা, যাঁরা সেইদিনগুলিতে গর্ভবতী থাকবে, বা যাদের কোলে থাকবে দুধের শিশু৷ 20 তাই প্রার্থনা কর য়েন শীতকালে বা বিশ্রামবারে তোমাদের পালাতে না হয়৷ 21 ‘সেই দিনগুলিতে এমন মহাকষ্ট হবে যা জগতের শুরু থেকে এই সময় পর্যন্ত আর কখনও হয় নি এবং হবে ও না৷ 22 আরো বলছি, সেইদিনগুলির সংখ্যা ঈশ্বর যদি কমিয়ে না দিতেন তবে কেউই অবশিষ্ট থাকত না৷ কিন্তু তাঁর মনোনীত লোকদের জন্য তিনি সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে রেখেছেন৷ 23 সেই সময় কেউ যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, মশীহ (খ্রীষ্ট)’ এখানে, অথবা ‘দেখ, তিনি ওখানে,’ তাহলে সে কথায় বিশ্বাস করো না৷ 24 ‘আমি একথা বলছি, কারণ অনেক ভণ্ড খ্রীষ্ট ও ভণ্ড ভাববাদীর উদয় হবে৷ তারা মহা আশ্চর্য কাজ করবে ও চিহ্ন দেখাবে, য়েন লোকদের ঠকাতে পারে৷ যদি সন্ভব হয় এমনকি ঈশ্বরের মনোনীত লোকদেরও ঠকাবে৷ 25 দেখ, আমি আগে থেকেইতোমাদের এসব কথা বলে রাখলাম৷ 26 ‘তাইতারা যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, খ্রীষ্ট প্রান্তরে আছেন!’ তবে তোমরা সেখানে য়েও না, অথবা যদি বলে দেখ, ‘তিনি ভেতরের ঘরে লুকিয়ে আছেন, তাদের কথায় বিশ্বাস করো না৷ 27 আকাশে বিদ্য়ুত্ য়েমন পূর্ব দিকে দেখা দিয়ে পশ্চিম দিক পর্যন্ত চমকে দেয়, তেমনি করেইমানবপুত্রের আবির্ভাব হবে৷ 28 য়েখানে শব, সেখানেইশকুন এসে জড় হবে৷ 29 মহাক্লেশের সেইদিনগুলির পরই, ‘সূর্য় অন্ধকার হয়ে যাবে, চাঁদ আর আলো দেবে না৷ তারাগুলো আকাশ থেকে খসে পড়বে আর আকাশমণ্ডলে মহা আলোড়নের সৃষ্টি হবে৷’ যিশাইয় 13:10; 34:4 30 ‘সেই সময় আকাশে মানবপুত্রের চিহ্ন দেখা দেবে৷ তখন পৃথিবীর সকল গোষ্ঠী হাহুতাশ করবে; আর তারা মানবপুত্রকে মহাপরাক্রম ও মহিমামণ্ডিত হয়ে আকাশের মেঘে করে আসতে দেখবে৷ 31 খুব জোরে তূরীধ্বনির সঙ্গে তিনি তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠাবেন৷ তাঁরা আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত, চার দিক থেকে তাঁর মনোনীত লোকদের জড়ো করবেন৷ 32 ‘ডুমুর গাছ দেখে শিক্ষা নাও, তার কচি ডালে পাতা বের হলে জানা যায় গ্রীষ্মকাল কাছে এসে গেছে৷ 33 ঠিক সেই রকম, যখন তোমরা দেখবে এসব ঘটছে, বুঝবে মানবপুত্রের পুনরুত্থানের সময় এসে গেছে, তা দরজার গোড়ায় এসে পড়েছে৷ 34 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না এসব ঘটছে এই যুগের লোকদের শেষ হবে না৷ 35 আকাশ ও সমগ্র পৃথিবী বিলুপ্ত হয়ে যাবে, কিন্তু আমার কোন কথা বিলুপ্ত হবে না৷ 36 ‘সেই দিন ও মুহূর্ত্তের কথা কেউ জানে না, এমন কি স্বর্গদূতেরা অথবা পুত্র নিজেও তা জানেন না, কেবলমাত্র পিতা (ঈশ্বর) তা জানেন৷ 37 নোহের সময় য়েমন হয়েছিল, মানবপুত্রের আগমনের সময় সেইরকম হবে৷ 38 নোহের সময়ে বন্যা আসার আগে, য়ে পর্যন্ত না নোহ সেই জাহাজে ঢুকলেন, লোকেরা সমানে ভোজন পান করেছে, বিয়ে করেছে ও ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিয়েছে৷ 39 ‘য়ে পর্যন্ত না বন্যা এসে তাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, সে পর্যন্ত তারা কিছুইবুঝতে পারে নি য়ে কি ঘটতে যাচ্ছে৷ মানবপুত্রের আগমনও ঠিক সেই রকমভাবেইহবে৷ 40 সেই সময় দুজন লোক মাঠে কাজ করবে৷ তাদের একজনকে নিয়ে যাওযা হবে, অন্য জন পড়ে থাকবে৷ 41 দুজন স্ত্রীলোক য়াঁতা পিষবে, তাদের একজনকে নিয়ে যাওযা হবে, আর অন্যজন পড়ে থাকবে৷ 42 ‘তাই তোমরা সজাগ থাক, কারণ তোমাদের প্রভু কোন দিন আসবেন, তা তোমরা জানো না৷ 43 তবে একথা মনে রেখো, যদি গৃহস্থ জানত রাত্রে কোন সময় চোর আসবে, তবে সে জেগে থাকত৷ সে চোরকে নিজের ঘরের সিঁধ কাটতে দিত না৷ 44 তাই তোমরাও প্রস্তুত থাক, কারণ তোমরা যখন তাঁর আগমনের বিষয়ে ভাববেও না, মানবপুত্র সেই সময়ই আসবেন৷ 45 ‘সেইবিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস তাহলে কে, যার ওপর তার প্রভু তাঁর বাড়ির অন্যান্য দাসদের ঠিক সময়ে খাবার দেবার দাযিত্ব দিয়েছেন? 46 সেই দাস ধন্য যার মনিব ফিরে এসে তাকে তার কর্তব্য করতে দেখবেন৷ 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি সেই দাসকেই তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার ভার দেবেন৷ 48 কিন্তু ধর, সেই দাস যদি দুষ্ট হয়, আর মনে মনে বলে, ‘আমার মনিবের ফিরে আসতে অনেক দেরী আছে৷ 49 ‘তাই সে তার সঙ্গী দাসদের মারধর করে এবং মাতালদের সঙ্গে খাওযা-দাওযা করতে শুরু করে৷ 50 তাহলে য়ে দিন ও য়ে সময়ের কথা সেইদাস ভাবতেও পারবে না বা জানবেও না, সেই দিন ও সেই মুহূর্ত্তেইতার মনিব এসে হাজির হবেন৷ 51 তখন তার মনিব তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন, ভণ্ডদের মধ্যে তাকে স্থান দেবেন; য়েখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘসে৷
1 ‘স্বর্গরাজ্য কেমন হবে, তা দশ জন কনের সঙ্গে তুলনা করা চলে, যাঁরা তাদের প্রদীপ নিয়ে বরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে বার হল৷ 2 তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল নির্বোধ আর অন্য পাঁচজন ছিল বুদ্ধিমতী৷ 3 সেই নির্বোধ কনেরা তাদের বাতি নিল বটে কিন্তু সঙ্গে তেল নিল না৷ 4 অপরদিকে বুদ্ধিমতী কনেরা তাদের প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে তেলও নিল৷ 5 বর আসতে দেরী হওযাতে তারা সকলেই তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল৷ 6 কিন্তু মাঝরাতে চিত্কার শোনা গেল, ‘দেখ, বর আসছে! তাকে বরণ করতে এগিয়ে যাও৷’ 7 ‘সেই কনেরা তখন উঠে তাদের প্রদীপ ঠিক করল৷ 8 কিন্তু নির্বোধ কনেরা বুদ্ধিমতী কনেদের বলল, ‘তোমাদের তেল থেকে আমাদের কিছু তেল দাও, কারণ আমাদের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে৷’ 9 ‘এর উত্তরে সেই বুদ্ধিমতী কনেরা বলল, ‘না৷ তেল যা আছে তাতে হয়তো আমাদের ও তোমাদের কুলোবে না, তোমরা বরং যাঁরা তেল বিক্রি করে তাদের কাছে গিয়ে নিজেদের জন্য তেল কিনে আনো৷’ 10 ‘তারা যখন তেল কেনার জন্য বাইরে যাচ্ছে, এমন সময় বর এসে উপস্থিত হল, তখন য়ে কনেরা প্রস্তুত ছিল তারা বরের সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল৷ তারপর দরজা বন্ধ করে দেওযা হল৷ 11 ‘শেষে অন্য কনেরা এসে বলল, ‘শুনছেন, আমাদের জন্য দরজা খুলে দিন৷’ 12 ‘কিন্তু এর উত্তরে বর বলল, ‘সত্যি বলছি, আমি তোমাদের চিনি না৷’ 13 ‘তাইতোমরা সজাগ থেকো, কারণ তোমরা সেই দিন বা মুহূর্ত্তের কথা জান না, কখন মানবপুত্র ফিরে আসবেন৷ 14 ‘স্বর্গরাজ্য এমন একজন লোকের মতো, যিনি বিদেশে যাবার আগে চাকরদের ডেকে সম্পত্তির ভার তাদের হাতে দিয়ে গেলেন৷ 15 তিনি একজনকে পাঁচ থলি মোহর, আর একজনকে দু থলি মোহর এবং আর একজনকে এক থলি মোহর দিলেন৷ যার য়েমন ক্ষমতা সেই অনুসারে দিয়ে তিনি বিদেশে চলে গেলেন৷ 16 য়ে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে সঙ্গে সঙ্গে সেই টাকা খাটাতে শুরু করল, আর তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর লাভ করল৷ 17 য়ে লোক দু’থলি মোহর পেয়েছিল সেও সেই টাকা খাটিয়ে আরো দু’থলি মোহর রোজগার করল৷ 18 কিন্তু য়ে এক থলি মোহর পেয়েছিল, সে গিয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তার মনিবের টাকা সেই গর্তে পুঁতে রাখল৷ 19 ‘অনেক দিন পর সেইচাকরদের মনিব ফিরে এসে তাদের কাছে হিসাব চাইলেন৷ 20 য়ে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে আরো পাঁচ থলি মোহর এনে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমাকে পাঁচ থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর রোজগার করেছি৷’ 21 ‘তার মনিব তখন তাকে বললেন, ‘বেশ, তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস৷ তুমি এই সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত থাকাতে আমি তোমার হাতে অনেক বিষয়ের ভার দেব৷ এস, তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও৷ 22 ‘এরপর য়ে দু থলি মোহর পেয়েছিল, সেও তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমায় দু থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো দু থলি মোহর রোজগার করেছি৷’ 23 ‘তার মনিব তাকে বললেন, ‘বেশ! তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস৷ তুমি সামান্য বিষয়ের উপর বিশ্বস্ত হলে, তাই আমি আরো অনেক কিছুর ভার তোমার ওপর দেব৷ এস, তুমি তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও৷ 24 ‘এরপর য়ে লোক এক থলি মোহর পেয়েছিল সে তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর আমি জানি আপনি বড় কড়া লোক৷ আপনি য়েখানে বীজ বোনেন নি সেখানে কাটেন; আর য়েখানে কোন বীজ ছড়ান নি সেখান থেকে শস্য সংগ্রহ করেন: 25 তাই আমি ভয়ে আপনার দেওযা মোহরের থলি মাটিতে পুঁতে লুকিয়ে রেখেছিলাম৷ আপনার যা ছিল তা নিন৷’ 26 ‘এর উত্তরে তার মনিব তাকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট ও অলস দাস! তুমি তো জানতে আমি য়েখানে বুনি না সেখানেই কাটি; আর তুমি এও জান য়েখানে আমি বীজ ছড়াইনা সেখান থেকেই সংগ্রহ করি৷ 27 তাই তোমার উচিত ছিল মহাজনদের কাছে আমার টাকা জমা রাখা, তাহলে আমি এসে আমার টাকার সঙ্গে কিছু সুদও পেতাম৷’ 28 ‘তাই তোমরা এর কাছ থেকে, ঐ মোহর নিয়ে যার দশ থলি মোহর আছে তাকে দাও৷ 29 হ্যাঁ, যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে, তাতে তার প্রচুর হবে৷ কিন্তু যার নেই, তার যা আছে তাও তার কাছে থেকে নিয়ে নেওযা হবে৷’ 30 তোমরা ঐ অকর্মন্য দাসকে অন্ধকারে বাইরে ফেলে দাও; সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে৷’ 31 ‘মানবপুত্র যখন নিজ মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে তাঁর স্বর্গদূতদেব সঙ্গে নিয়ে এসে মহিমার সিংহাসনে বসবেন, 32 তখন সমস্ত জাতি তাঁর সামনে জড়ো হবে৷ রাখাল য়েমন ভেড়া ও ছাগল আলাদা করে, তেমনি তিনি সব লোককে দুভাগে ভাগ করবেন৷ 33 তিনি নিজের ডানদিকে ভেড়াদের রাখবেন আর বাঁদিকে ছাগলদের রাখবেন৷ 34 ‘এরপর রাজা তাঁর ডানদিকের যাঁরা তাদের বলবেন, ‘আমার পিতার আশীর্বাদ পেয়েছ, তোমরা এস! জগত সৃষ্টির শুরুতেইয়ে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তার অধিকার গ্রহণ কর৷ 35 কারণ আমি ক্ষুধিত ছিলাম, তোমরা আমায় খেতে দিয়েছিলে৷ আমি পিপাসিত ছিলাম আর তোমরা আমাকে পান করবার জল দিয়েছিলে৷ আমি অচেনা আগন্তুক রূপে এসেছিলাম আর তোমর আমায় আশ্রয় দিয়েছিলে৷ 36 যখন আমার পরনে কোন কাপড় ছিল না, তখন তোমরা আমায় পোশাক পরিয়েছিলে৷ আমি অসুস্থ ছিলাম, তোমরা আমার সেবা করেছিলে৷ আমি কারাগারে ছিলাম, তোমর আমায় দেখতে এসেছিলে৷’ 37 ‘এর উত্তরে যাঁরা ভাল তারা বলবে, ‘প্রভু, কখন আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, পিপাসিত দেখে জল পান করতে দিয়েছিলাম? 38 কখনই বা আপনাকে অচেনা আগন্তুক দেখে আতিথেয়তা করেছিলাম অথবা আপনার পরনে কাপড় নেই দেখে পোশাক পরিয়েছিলাম? 39 আর কখনই বা অসুস্থ বা কারাগারে আছেন দেখে আপনাকে দেখতে গিয়েছিলাম? 40 ‘এর উত্তরে রাজা তাদের বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এইতুচ্ছতমদের মধ্যে যখন কোন একজনের প্রতি তোমরা এরূপ করেছিলে, তখন আমারই জন্য তা করেছিলে৷’ 41 ‘এরপর রাজা তাঁর বাম দিকের লোকদের বলবেন, ‘ওহে অভিশপ্তরা, তোমরা আমার কাছ থেকে দূর হও, দিয়াবল ও তার দূতদের জন্য য়ে ভযাবহ অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে গিয়ে পড়৷ 42 কারণ আমি যখন ক্ষুধার্ত ছিলাম, তখন তোমরা আমায় খেতে দাও নি৷ আমার যখন পিপাসা পেয়েছিল, তখন আমায় জল দাও নি৷ 43 আমি অচেনা আগন্তুকরূপে এসেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার আতিথেয়তা করনি৷ আমার পোশাক ছিল না, কিন্তু তোমরা আমায় পোশাক দাও নি৷ আমি অসুস্থ ছিলাম ও কারাগারে গিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার খোঁজ নাও নি৷ 44 ‘এর উত্তরে তারা তাঁকে বলবে, ‘প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত, কি পিপাসিত, কি আগন্তুকরূপে দেখে অথবা কবেইবা আপনার পরনে কাপড় ছিল না, বা আপনি অসুস্থ ছিলেন ও কারাগারে গিয়েছিলেন বলে আমরা আপনার সাহায্য করিনি?’ 45 ‘এ কথার উত্তরে রাজা বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যখন এই অতি সামান্য যাঁরা তাদের কোন একজনের প্রতি তা করনি, তখন আমারই প্রতি তা কর নি৷’ 46 ‘এরপর অধার্মিক লোকেরা যাবে অনন্ত শাস্তি ভোগ করতে, কিন্তু ধার্মিকেরা প্রবেশ করবে অনন্ত জীবনে৷’
1 এই সব কথা শেষ করে যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 2 ‘তোমরা জানো, আর দুদিন পরই নিস্তারপর্ব শুরু হবে, তখন মানবপুত্রকে ক্রুশে দেবার জন্য শত্রুদের হাতে তুলে দেওযা হবে৷’ 3 সেইসময় মহাযাজক কায়াফার বাড়ির উঠানে প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা এসে ষড়যন্ত্র করতে বসল, 4 য়েন তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করতে পারে ও তাঁকে ফাঁদে ফেলে হত্যা করতে পারে৷ 5 তারা বলল, ‘আমরা নিস্তারপর্বের সময় একাজ করব না, তাতে লোকদের মধ্যে হয়তো গণ্ডগোল বাধতে পারে৷’ 6 যীশু যখন বৈথনিযায় কুষ্ঠরোগী শিমোনের বাড়িতে ছিলেন সেই সময় একজন স্ত্রীলোক যীশুর কাছে এল৷ 7 তার কাছে শ্বেতপাথরেরবোতলে খুব দামী সুগন্ধি ছিল৷ যীশু যখন সেখানে খেতে বসেছিলেন, তখন সে ঐ আতর যীশুর মাথায় ঢেলে দিল৷ 8 তাই দেখে তাঁর শিষ্যরা রেগে গেলেন, তাঁরা বললেন, ‘এভাবে অপচয় করা হচ্ছে কেন? 9 এটা তো অনেক টাকায় বিক্রি করা য়েত, আর সেই টাকা গরীবদের দেওযা য়েত৷’ 10 তারা যা বলাবলি করছিল, যীশু তা জানতে পেরে তাদের বললেন, ‘তোমরা এই স্ত্রীলোককে কেন দুঃখ দিচ্ছ? ও তো আমার প্রতি ভাল কাজইকরল৷ 11 কারণ গরীবরা তোমাদের সঙ্গে সবসময়ইথাকবে৷কিন্তু তোমরা আমায় সব সময় পাবে না৷ 12 আমার দেহের ওপর আতর ঢেলে দিয়ে সে তো আমাকে সমাধিতে রাখার উপয়োগী কাজইকরল৷ 13 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সারা জগতে য়েখানেই এই সুসমাচার প্রচার করা হবে, সেখানেইএর এইকাজের কথা বলা হবে৷’ 14 তখন বারো জন শিষ্যর মধ্যে একজন, যার নাম যিহূদা ঈষ্করিযোতীয়, সে প্রধান যাজকদের কাছে গিয়ে বলল, 15 ‘আমি যদি তাঁকে আপনাদের হাতে ধরিয়ে দিই, তবে আপনারা আমায় কি দেবেন বলুন?’ তারা তাকে গুনে গুনে ত্রিশটা রূপোর টাকা দিল৷ 16 সেই মুহূর্ত্ত থেকেই যিহূদা তাঁকে ধরিয়ে দেবার সুয়োগ খুঁজতে লাগল৷ 17 খামিরবিহীন রুটির পর্বের প্রথম দিনে যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘আপনার জন্য আমরা কোথায় নিস্তারপর্বের ভোজের আযোজন করব? আপনি কি চান?’ 18 যীশু বললেন, ‘তোমরা ঐ গ্রামে আমার পরিচিত একজনের কাছে যাও, তাকে গিয়ে বল, ‘গুরু বলেছেন, আমার নির্ধারিত সময় কাছে এসে গেছে, আমি আমার শিষ্যদের সঙ্গে তোমার বাড়িতে নিস্তারপর্ব পালন করব৷” 19 তখন শিষ্যরা যীশুর কথামতো কাজ করলেন, তারা সেখানে নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করলেন৷ 20 সন্ধ্যা হলে পর যীশু সেই বারো জন শিষ্য়ের সঙ্গে নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে বসলেন৷ 21 তাঁরা যখন খাচ্ছেন সেই সময় যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে৷’ 22 এতে শিষ্যরা খুবই দুঃখ পেয়ে এক একজন করে যীশুকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ‘প্রভু, সে কি আমি?’ 23 তখন যীশু বললেন, ‘য়ে আমার সঙ্গে বাটিতে হাত ডোবালো, সেই আমাকে শত্রুর হাতে সঁপে দেবে৷ 24 মানবপুত্রের বিষয়ে শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে, সেইভাবেই তাঁকে য়েতে হবে৷ কিন্তু ধিক্ সেই লোক, য়ে মানবপুত্রকে ধরিয়ে দেবে৷ সেই লোকের জন্ম না হওযাই তার পক্ষে ভাল ছিল৷ 25 য়ে যীশুকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিতে যাচ্ছিল, সেই যিহূদা বলল, ‘গুরু সে নিশ্চয়ই আমি নই ?’ যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি নিজেইতো একথা বলছ৷’ 26 তাঁরা খাচ্ছিলেন, এমন সময় যীশু একটি রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, আর সেই রুটি টুকরো টুকরো করে শিষ্যদের দিয়ে বললেন, ‘এই নাও, খাও, এ আমার দেহ৷’ 27 এরপর তিনি পানপাত্র নিয়ে ধন্যবাদ দিলেন আর পানপাত্রটি শিষ্যদের দিয়ে বললেন, ‘তোমরা সকলে এর থেকে পান কর৷ 28 কারণ এ আমার রক্ত, নতুন নিয়ম প্রতিষ্ঠিত হওযার রক্ত যা বহুলোকের পাপ মোচনের জন্য পাতিত হল৷ 29 আমি তোমাদের বলছি, এখন থেকে আমি এইদ্রাক্ষারস আর কখনও পান করব না, য়ে পর্যন্ত না আমার পিতার রাজ্যে তোমাদের সঙ্গে নতুন দ্রাক্ষারস পান করি৷’ 30 এরপর তাঁরা একটি গান করতে করতে জৈতুন পর্বতমালায় চলে গেলেন৷ 31 যীশু তাদের বললেন, ‘আমার কারণে তোমরা আজ রাত্রেইবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে৷ আমি একথা বলছি কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে,‘আমি মেষপালককে আঘাত করবো৷ তাঁর মৃত্যু হলে পালের মেষরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে৷’ সখরিয় 13:7 32 কিন্তু আমি পুনরুত্থিত হলে পর, তোমাদের আগে আগে গালীলে যাব৷’ 33 এর উত্তরে পিতর বললেন, ‘আপনার কারণে সকলেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে পারে কিন্তু আমি কখনইবিশ্বাস হারাবো না৷’ 34 যীশু বললেন, ‘আমি সত্যি বলছি, আজ রাত্রেইতুমি বলবে য়ে তুমি আমাকে চেনো না৷ ভোরে মোরগ ডাকার আগেই তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷’ 35 কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, ‘আমি আপনাকে চিনি না, একথা আমি কখনও বলব না৷ আপনার সঙ্গে আমি মরতেও প্রস্তুত৷’ অন্য শিষ্যরা ও সকলে একইকথা বললেন৷ 36 এরপর যীশু তাঁদের সঙ্গে গেত্শিমানী নামে একটা জায়গায় গিয়ে তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘আমি ওখানে গিয়ে যতক্ষণ প্রার্থনা করি, তোমরা এখানে বসে থাক৷’ 37 এরপর তিনি পিতর ও সিবদিয়ের দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চলতে থাকলেন৷ য়েতে য়েতে তাঁর মন উদ্বেগ ও ব্যথায় ভরে গেল, তিনি অভিভূত হয়ে পড়লেন৷ 38 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘দুঃখে আমার হৃদয় ভেঙ্গে যাচ্ছে৷ তোমরা এখানে থাক আর আমার সঙ্গে জেগে থাকো৷’ 39 পরে তিনি কিছু দূরে গিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে প্রার্থনা করে বললেন, ‘আমার পিতা, যদি সন্ভব হয় তবে এই কষ্টের পানপাত্র আমার কাছ থেকে দূরে যাক; তবু আমার ইচ্ছামতো নয়, কিন্তু তোমারই ইচ্ছা পূর্ণ হোক্৷’ 40 এরপর তিনি শিষ্যদের কাছে ফিরে গিয়ে দেখলেন, তাঁরা ঘুমাচ্ছেন৷ তিনি পিতরকে বললেন, ‘একি! তোমরা আমার সঙ্গে এক ঘন্টাও জেগে থাকতে পারলে না? 41 জেগে থাক ও প্রার্থনা কর য়েন প্রলোভনে না পড়৷ তোমাদের আত্মা ইচ্ছুক বটে, কিন্তু দেহ দুর্বল৷’ 42 তিনি গিয়ে আর একবার প্রার্থনা করলেন, ‘হে আমার পিতা, এই দুঃখের পানপাত্র থেকে আমি পান না করলে যদি তা দূর হওযা সন্ভব না হয় তবে তোমারইইচ্ছা পূর্ণ হোক্৷’ 43 পরে তিনি ফিরে এসে দেখলেন, শিষ্যরা আবার ঘুমিয়ে পড়েছেন, কারণ তাদের চোখ ভারী হয়ে গিয়েছিল৷ 44 তখন তিনি তাঁদের ছেড়ে চলে গেলেন ও তৃতীয় বার প্রার্থনা করলেন৷ তিনি আগের মতো সেই একই কথা বলে প্রার্থনা করলেন৷ 45 পরে তিনি শিষ্যদের কাছে এসে বললেন, ‘তোমরা এখনও ঘুমিয়ে রয়েছ ও বিশ্রাম করছ? শোন, সময় ঘনিয়ে এল, মানবপুত্রকে পাপীদের হতে তুলে দেওযা হবে৷ 46 ওঠ, চল আমরা যাই! ঐ দেখ! য়ে লোক আমায় ধরিয়ে দেবে, সে এসে গেছে৷’ 47 তিনি তখনও কথা বলছেন, এমন সময় সেইবারোজন শিষ্যের মধ্যে একজন, যিহূদা সেখানে এসে হাজির হল, তার সঙ্গে বহুলোক ছোরা ও লাঠি নিয়ে এল৷ প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা এদের পাঠিয়েছিলেন৷ 48 য়ে তাঁকে ধরিয়ে দিচ্ছিল, সে ঐ লোকদের একটা সাঙ্কেতিক চিহ্ন দিয়ে বলেছিল, ‘আমি যাকে চুমু দেব, সেই ঐ লোক, তাকে তোমরা ধরবে৷’ 49 এরপর যিহূদা যীশুর কাছে এগিয়ে এসে বলল, ‘গুরু, নমস্কার,’ এই বলে সে তাঁকে চুমু দিল৷ 50 যীশু তাঁকে বললেন, ‘বন্ধু, তুমি যা করতে এসেছ কর৷’তখন তারা এগিয়ে এসে জাপটে ধরে যীশুকে গ্রেপ্তার করল৷ 51 সেই সময় যীশুর সঙ্গীদের মধ্যে একজন তাঁর তরোয়ালের দিকে হাত বাড়ালেন আর তা বের করে মহাযাজকদের দাসকে আঘাত করে তার একটা কান কেটে দিলেন৷ 52 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘তোমার তরোয়ালটি খাপে রাখ৷ যাঁরা তরোয়াল চালায় তারা তরোয়ালের আঘাতেইমরবে৷ 53 তোমরা কি ভাব য়ে, আমি আমার পিতা ঈশ্বরের কাছে চাইতে পারি না? চাইলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে আমার জন্য বারোটিরও বেশী স্বর্গদূতবাহিনী পাঠিয়ে দেবেন৷ 54 কিন্তু তাই যদি হয় তাহলে শাস্ত্রের বাণী কিভাবে পূর্ণ হবে, শাস্ত্রে যখন বলছে এভাবেই সব কিছু অবশ্যই ঘটবে?’ 55 সেই সময় যীশু লোকদের বললেন, ‘লোকে য়েমন ডাকাত ধরতে যায়, সেই ভাবে তোমরা ছোরা ও লাঠি নিয়ে আমায় ধরতে এসেছ? আমি তো প্রতিদিন মন্দিরের মধ্যে বসে শিক্ষা দিয়েছি; 56 কিন্তু তোমরা আমায় গ্রেপ্তার কর নি৷ যাইহোক, এসব কিছুই ঘটল য়েন ভাববাদীদের লেখা সকল কথাই পূর্ণ হয়৷’ তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে গেলেন৷ 57 তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করে মহাযাজক কায়াফার বাড়িতে নিয়ে এল, সেখানে ব্যবস্থার শিক্ষক ও ইহুদী নেতারা জড়ো হয়েছিলেন৷ 58 পিতর দূর থেকে যীশুর পিছনে পিছনে মহাযাজকের বাড়ির উঠোন পর্যন্ত গেলেন৷ শেষ পর্যন্ত কি হয় তা দেখবার জন্য তিনি ভেতরে গিয়ে দাসদের সঙ্গে বসলেন৷ 59 যীশুকে য়েন মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে তাই যীশুর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী য়োগাড় করার জন্য প্রধান যাজকরা ও ইহুদী মহাসভার সব সভ্য়রা সেখানে সমবেত হয়েছিলেন৷ 60 অনেকে মিথ্যা সাক্ষ্য দেবার জন্য সেখানে হাজির হয়েছিল, তবু য়ে সাক্ষ্য যীশুকে হত্যা করার জন্য দরকার তা পাওযা গেল না৷ 61 শেষে দুজন লোক এসে বলল, ‘এইলোক বলেছিল, ‘আমি ঈশ্বরের মন্দির ভেঙ্গে ফেলতে ও তা আবার তিন দিনের ভেতরে গেঁথে তুলতে পারি৷’ 62 তখন মহাযাজক উঠে দাঁড়িয়ে যীশুকে বললেন, ‘তুমি কি এর জবাবে কিছুই বলবে না? এরা তোমার বিরুদ্ধে কি সাক্ষ্য দিচ্ছে?’ 63 কিন্তু যীশু নীরব থাকলেন৷তখন মহাযাজক তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাকে জীবন্ত ঈশ্বরের নামে দিব্যি দিচ্ছি, আমাদের বল, তুমি কি সেইখ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র?’ 64 যীশু তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমিই একথা বললে৷ তবে আমি তোমাকে এটাও বলছি, এখন থেকে তোমরা মানবপুত্রকে মহাপরাক্রান্ত ঈশ্বরের ডানপাশে বসে থাকতে ও আকাশে মেঘের মধ্যে দিয়ে আসতে দেখবে৷’ 65 তখন মহাযাজক তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে বললেন, ‘এ ঈশ্বরের নিন্দা করল, আমাদের আর অন্য সাক্ষ্যের দরকার কি?দেখ, তোমরা এখন ঈশ্বর নিন্দা শুনলে! 66 তোমরা কি মনে কর? এর উত্তরে তারা বলল, ‘এ মৃত্যুর য়োগ্য৷’ 67 তখন তারা যীশুর মুখে থুথু দিল ও তাঁকে ঘুসি মারল৷ 68 কেউ কেউ তাঁকে চড় মারল ও বলল, ‘ওরে খ্রীষ্ট, আমাদের জন্য কিছু ভাববানী বল, কে তোকে মারল?’ 69 পিতর যখন বাইরে উঠোনে বসেছিলেন তখন একজন দাসী এসে বলল, ‘তুমিও গালীলে যীশুর সঙ্গে ছিলে৷’ 70 কিন্তু পিতর সবার সামনে একথা অস্বীকার করে বললেন, ‘তুমি কি বলছ, আমি তার কিছুইজানি না৷’ 71 তিনি যখন ফটকের সামনে গেলেন, তখন আর একজন দাসী তাকে দেখে সেখানে যাঁরা ছিল তাদের বলল, ‘এ লোকটা নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিল৷’ 72 পিতর আবার অস্বীকার করলেন৷ তিনি দিব্যি করে বললেন, ‘আমি ঐ লোকটাকে মোটেই চিনি না৷’ 73 এর কিছু পরে, সেখানে যাঁরা দাঁড়িয়েছিল তারা পিতরের কাছে এসে বলল, ‘তুমি ঠিক ওদেরই একজন কারণ তোমার কথার উচ্চারণের ধরণ দেখেই তা বুঝতে পারা যাচ্ছে৷’ 74 তখন পিতর দিব্যি করে শাপ দিয়ে বললেন, ‘আমি ঐ লোকটাকে আদৌ চিনি না৷’ আর তখনইমোরগ ডেকে উঠল৷ 75 তখন পিতরের মনে পড়ে গেল যীশু তাকে যা বলেছিলেন, ‘ভোরের মোরগ ডাকার আগেই তুমি তাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷’ আর পিতর বাইরে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন৷
1 ভোর হলে প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা সবাইমিলেযীশুকে হত্যা করার চক্রান্ত করল৷ 2 তারা তাঁকে বেঁধে রোমীয় রাজ্যপাল পীলাতের কাছে হাজির করল৷ 3 যীশুকে শত্রুদের হাতে য়ে ধরিয়ে দিয়েছিল, সেই যিহূদা যখন দেখল যীশুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তখন তার মনে খুব ক্ষোভ হল৷ সে তখন যাজকদের ও সমাজপতিদের কাছে গিয়ে সেই ত্রিশটা রূপোর টাকা ফিরিয়ে দিয়ে বলল, 4 ‘একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করার জন্য আপনাদের হাতে তুলে দিয়ে তাঁর প্রতি আমি বিশ্বাসঘাতকতা করেছি, আমি মহাপাপ করেছি৷ইহুদী নেতারা বলল, ‘তাতে আমাদের কি? তুমি বোঝগে যাও৷’ 5 তখন যিহূদা সেই টাকা মন্দিরের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিল, পরে বাইরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মরল৷ 6 প্রধান যাজকরা সেইরূপোর টাকাগুলি কুড়িয়ে নিয়ে বললেন, ‘মন্দিরের তহবিলে এই টাকা জমা করা আমাদের বিধি-ব্যবস্থা বিরুদ্ধ কাজ, কারণ এটা খুনের টাকা৷’ 7 তাই তারা পরামর্শ করে ঐ টাকায় কুমোরদের একটা জমি কিনলেন৷ য়েন জেরুশালেমে য়েসব বিদেশী মারা যাবে, তাদের সেখানে কবর দেওযা য়েতে পারে৷ 8 সেই জন্য ঐ কবরখানাকে আজও লোকে ‘রক্তক্ষেত্র’ বলে৷ 9 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:‘তারা সেইত্রিশটা রূপোর টাকা নিল, এটাই হল তাঁর মূল্য, ইস্রায়েলের জনগণই তাঁর মূল্য নির্ধারণ করেছিল৷ 10 আর প্রভুর নির্দেশ অনুসারেই সেই টাকা দিয়ে তারা কুমোরের জমি কিনেছিল৷’৷ 11 এদিকে যীশুকে রাজ্যপালের সামনে হাজির করা হল; রাজ্যপাল যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’যীশু বললেন, ‘হ্যাঁ, আপনি য়েমন বললেন৷’ 12 কিন্তু প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা সমানে যখন তাঁর বিরুদ্ধে দোষ দিচ্ছিল, তখন তিনি তার একটারও জবাব দিলেন না৷ 13 তখন পীলাত তাঁকে বললেন, ‘ওরা, তোমার বিরুদ্ধে কত দোষ দিচ্ছে, তুমি কি শুনতে পাচ্ছ না?’ 14 কিন্তু যীশু তাঁকে কোন জবাব দিলেন না, এমন কি তাঁর বিরুদ্ধে একটা অভিযোগেরও উত্তর দিলেন না, এতে পীলাত আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 15 রাজ্যপালের রীতি অনুসারে প্রত্যেক নিস্তারপর্বের সময় জনসাধারণের ইচ্ছানুযাযী য়ে কোন কয়েদীকে তিনি মুক্ত করে দিতেন৷ 16 সেই সময় বারাব্বানামে এক কুখ্যাত আসামী কারাগারে ছিল৷ 17 তাই লোকরা সেখানে একসঙ্গে জড়ো হলে পীলাত তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের জন্য আমি কাকে ছেড়ে দেব? তোমরা কি চাও, বারাব্বাকে বা যীশু, যাকে খ্রীষ্ট বলে তাকে?’ 18 কারণ পীলাত জানতেন, তারা যীশুর ওপর ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছিল৷ 19 পীলাত যখন বিচার আসনে বসে আছেন, সেই সময় তাঁর স্ত্রী তাঁকে বলে পাঠালেন, ‘ঐ নির্দোষ লোকটির প্রতি তুমি কিছু করো না, কারণ রাত্রে স্বপ্নে আমি তাঁর বিষয়ে যা দেখেছি তাতে আজ বড়ই উদ্বেগে কাটছে৷’ 20 কিন্তু প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা জনতাকে প্ররোচনা দিতে লাগল, য়েন তারা বারাব্বাকে ছেড়ে দিতে ও যীশুকে মৃত্যুদণ্ড দেওযার কথা বলে৷ 21 তখন রাজ্যপাল তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই দুজনের মধ্যে তোমরা কাকে চাও য়ে আমি তোমাদের জন্য ছেড়ে দিই?’ তারা বলল, ‘বারাব্বাকে!’ 22 পীলাত তখন তাদের বললেন, ‘তাহলে যীশু যাকে মশীহ বলে তাকে নিয়ে কি করব?’তারা সবাইবলল, ‘ওকে ক্রুশে দেওযা হোক৷’ 23 পীলাত বললেন, ‘কেন? ও কি অন্যায় করেছে?’ কিন্তু তারা তখন আরো জোরে চিত্কার করতে লাগল, ‘ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দাও!’ 24 পীলাত যখন দেখলেন য়ে তাঁর চেষ্টার কোন ফল হল না, বরং আরো গোলমাল হতে লাগল, তখন তিনি জল নিয়ে লোকদের সামনে হাত ধুয়ে বললেন, ‘এই লোকের রক্তপাতের জন্য আমি দাযী নই৷’ এটা তোমাদেরইদায়৷ 25 এই কথার জবাবে লোকেরা সমস্বরে বলল, ‘আমরা ও আমাদের সন্তানরা ওব রক্তের জন্য দাযী থাকব৷’ 26 তখন পীলাত তাদের জন্য বারাব্বাকে ছেড়ে দিলেন; কিন্তু যীশুকে চাবুক মেরে ক্রুশে দেবার জন্য সঁপে দিলেন৷ 27 এরপর রাজ্যপালের সেনারা যীশুকে রাজভবনের সভাগৃহে নিয়ে গিয়ে সেখানে সমস্ত সেনাদলকে তাঁর চারধারে জড়ো করল৷ 28 তারা যীশুর পোশাক খুলে নিল, আর তাঁকে একটা লাল রঙের পোশাক পরাল৷ 29 পরে কাঁটা লতা দিয়ে একটা মুকুট তৈরী করে তা তাঁর মাথায় চেপে বসিয়ে দিল, আর তাঁর ডান হাতে একটা লাঠি দিল৷ পরে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে তাঁকে ঠাট্টা করে বলল, ‘ইহুদীদের রাজা, দীর্ঘজীবি হোন্!’ 30 তারা তাঁর মুখে থুথু দিল ও তাঁর লাঠিটি নিয়ে তাঁর মাথায় মারতে লাগল৷ 31 এইভাবে তাঁকে বিদ্রূপ করবার পর তারা সেইপোশাকটি তাঁর গা থেকে খুলে নিয়ে তাঁর নিজের পোশাক আবার পরিয়ে দিল, তারপর তাঁকে ক্রুশে দেবার জন্য নিয়ে চলল৷ 32 সৈন্যরা যখন যীশুকে নিয়ে নগরের বাইরে যাচ্ছে, তখন পথে শিমোন নামে কুরীশীয় অঞ্চলের একজন লোককে দেখতে পেয়ে যীশুর ক্রুশ বইবার জন্য তাকে তারা জোর করে বাধ্য করল৷ 33 পরে তারা ‘গলগথা’ নামে এক জায়গায় এসে পৌঁছল৷ ‘গলগথা’ শব্দটির অর্থ ‘মাথার খুলিস্থান৷’ 34 সেখানে পৌঁছে তারা যীশুকে মাদক দ্রব্য মেশানো তিক্ত দ্রাক্ষারস পান করতে দিল; কিন্তু তিনি তা সামান্য আস্বাদ করে আর খেতে চাইলেন না৷ 35 তারা তাঁকে ক্রুশে দিয়ে তাঁর জামা কাপড় খুলে নিয়ে ঘুঁটি চেলে সেগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিল৷ 36 আর সেখানে বসে যীশুকে পাহারা দিতে লাগল৷ 37 তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের এই লিপি ফলকটি তাঁর মাথার উপরে ক্রুশে লাগিয়ে দিল, ‘এ যীশু, ইহুদীদের রাজা৷’ 38 তারা দুজন দস্যুকেও যীশুর সঙ্গে ক্রুশে দিল, একজনকে তাঁর ডানদিকে ও অন্যজনকে তাঁর বাঁ দিকে৷ 39 সেই সময় ঐ রাস্তা দিয়ে য়ে সব লোক যাতাযাত করছিল, তারা তাদের মাথা নেড়ে তাঁকে ঠাট্টা করে বলল, 40 ‘তুমি না মন্দির ভেঙ্গে আবার তা তিন দিনের মধ্যে তৈরী করতে পার! তাহলে এখন নিজেকে রক্ষা কর৷ তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে ক্রুশ থেকে নেমে এস৷’ 41 সেইভাবেই প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ইহুদী নেতারা বিদ্রূপ করে তাঁকে বলতে লাগলেন, 42 ‘এ লোক তো অপরকে রক্ষা করত, কিন্তু এ নিজেকে বাঁচাতে পারে না! ও তো ইস্রায়েলের রাজা, তাহলে এখন ও ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, তাহলে আমরা ওর ওপর বিশ্বাস করব৷ 43 ঐ লোকটি ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে৷ যদি তিনি চান, তবে ওকে এখনই রক্ষা করুন, কারণ ও তো বলেছে, ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র৷'" 44 তাঁর সঙ্গে য়ে দুজন দস্যুকে ক্রুশে দেওযা হয়েছিল, তারাও সেইভাবেই তাঁকে বিদ্রূপ করতে লাগল৷ 45 সেই দিন দুপুর বারোটা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত সমস্ত দেশ অন্ধকারে ঢেকে রইল৷ 46 প্রায় তিনটের সময় যীশু খুব জোরে বলে উঠলেন, ‘এলি, এলি লামা শবক্তানী?’ যার অর্থ, ‘ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় ত্যাগ করেছ?’ 47 যাঁরা সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাদের মধ্যে কয়েকজন একথা শুনে বলতে লাগল, ‘ও এলীয়কে ডাকছে৷’ 48 তাদের মধ্যে একজন তখনই দৌড়ে গিয়ে একটা স্পঞ্জ কতকটা সিরকায় ডুবিয়ে দিয়ে একটা নলের মাথায় সেটা লাগিয়ে তা যীশুর মুখে তুলে ধরে তাকে খেতে দিল৷ 49 কিন্তু অন্যরা বলতে লাগল, ‘ছেড়ে দাও, দেখি এলীয় ওকে রক্ষা করতে আসেন কি না?’ 50 পরে যীশু আর একবার খুব জোরে চিত্কার করে প্রাণ ত্যাগ করলেন৷ 51 সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের মধ্যেকার সেই ভারী পর্দাটা ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত চিরে দুভাগ হয়ে গেল, পৃথিবী কেঁপে উঠল, বড় বড় পাথরের চাঁই ফেটে গেল, 52 সমাধিগুহাগুলি খুলে গেল, আর মারা গিয়েছিলেন এমন অনেক ঈশ্বরের লোকের দেহ পুনরুত্থিত হল৷ 53 যীশুর পুনরুত্থানের পর এরা কবর ছেড়ে পবিত্র নগর জেরুশালেমে গিয়ে বহুলোককে দেখা দিয়েছিলেন৷ 54 ক্রুশের পাশে শতপতি ও তার সঙ্গে যাঁরা যীশুকে পাহারা দিচ্ছিল, তারা ভূমিকম্প ও অন্য সব ঘটনা দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে বলল, ‘সত্যইইনি ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন৷’ 55 সেখানে বহু স্ত্রীলোক ছিলেন, যাঁরা দূরে দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখছিলেন৷ এই মহিলারা গালীল থেকে যীশুর দেখাশোনার জন্য তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন৷ 56 তাঁদের মধ্যে ছিলেন মগ্দলীনী মরিয়ম, যাকোব ও য়োষেফের মা মরিয়ম আর যাকোব ও য়োহনেরমা৷ 57 সন্ধ্যা নেমে আসছে এমন সময় আরিমাথিযার য়োষেফ নামে এক ধনী ব্যক্তি জেরুশালেমে এলেন; তিনিও যীশুর একজন অনুগামী ছিলেন৷ 58 পীলাতের কাছে গিয়ে য়োষেফ যীশুর দেহটা চাইলেন৷ তখন পীলাত তাকে তা দিতে হুকুম করলেন৷ 59 য়োষেফ দেহটি নিয়ে পরিষ্কার একটা কাপড়ে জড়ালেন৷ 60 তারপর সেই দেহটা নিয়ে তিনি নিজের জন্য পাহাড়ের গায়ে য়ে নতুন সমাধিগুহা কেটে রেখেছিলেন, তাতে রাখলেন৷ পরে সেই সমাধির মুখ বন্ধ করতে বড় একটা পাথর গড়িয়ে নিয়ে গিয়ে তা বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন৷ 61 মরিয়ম মগ্দলীনী ও সেই অন্য মরিয়ম কবরের সামনে বসে রইলেন৷ 62 পরের দিন, যখন শুক্রবার শেষ হল, অর্থাত্ প্রস্তুতি পর্বের পরের দিন, প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা গিয়ে পীলাতের সঙ্গে দেখা করল৷ 63 তারা বলল, ‘হুজুর, আমাদের মনে পড়ছে সেই প্রতারক তাঁর জীবনকালে বলেছিল, ‘আমি তিনদিন পরে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হব৷’ 64 তাই আপনি হুকুম দিন য়েন তিন দিন কবরটা পাহারা দেওযা হয়, তা না হলে ওর শিষ্যরা হয়তো এসে দেহটা চুরি করে নিয়ে গিয়ে বলবে, তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন; তাহলে প্রথমটার চেয়ে শেষ ছলনাটা আরো খারাপ হবে৷’ 65 পীলাত তাদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে পাহারা দেবার লোক আছে, তোমরা গিয়ে যত ভালভাবে পারো পাহারা দেবার ব্যবস্থা কর৷’ 66 তখন তারা সকলে গিয়ে কবরের মুখের সেই পাথররাশির উপর সীলমোহর করল ও সেখানে একদল প্রহরী মোতায়েন করে সমাধিটি সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করল৷
1 বিশ্রামবারেরশেষে সপ্তাহের প্রথম দিন, অর্থাত্, ববিবার খুব ভোরে মগ্দলীনী মরিয়ম ও অন্য মরিয়ম কবরটা দেখতে এলেন৷ 2 তখন হঠাত্ ভীষণ ভূমিকম্প হল, কারণ প্রভুর একজন স্বর্গদূত স্বর্গ থেকে নেমে এসে সেই পাথরখানা সমাধিগুহার মুখ থেকে সরিয়ে দিলেন ও তার ওপরে বসলেন৷ 3 তাঁর চেহারা বিদ্যুত ঝলকের মতো উজ্জ্বল ও তাঁর পোশাক তুষারশুভ্র৷ 4 তাঁর ভয়ে পাহারাদাররা কাঁপতে কাঁপতে মড়ার মতো হয়ে গেল৷ 5 সেই স্বর্গদূত ঐ স্ত্রীলোকদের বললেন, ‘তোমরা ভয় পেও না, আমি জানি তোমরা, য়াঁকে ক্রুশে দিয়েছিলে তাঁকে খুঁজছ৷ 6 কিন্তু তিনি এখানে নেই৷ তিনি য়েমন বলেছিলেন, তেমনি পুনরুত্থিত হয়েছেন৷ এস, য়েখানে তাঁকে শুইয়ে রাখা হয়েছিল তা দেখ; 7 আর তাড়াতাড়ি গিয়ে তাঁর শিষ্যদের বল, ‘তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন৷ তিনি তোমাদের আগে আগে গালীলে যাচ্ছেন, তোমরা তাঁকে সেখানে দেখতে পাবে৷'" আমি তোমাদের য়ে কথা বললাম তা মনে রেখো৷ 8 তখন সেইস্ত্রীলোকেরা তাড়াতাড়ি কবরের কাছ থেকে চলে গেলেন৷ তাঁরা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, তবু তাঁদের মন আনন্দে ভরে গিয়েছিল, তাঁরা যীশুর শিষ্যদের একথা বলার জন্য দৌড়ালেন৷ 9 হঠাত্ যীশু তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে বললেন, ‘শুভেচ্ছা নাও!’ তখন তাঁরা যীশুর কাছে গিয়ে তাঁর পা জড়িয়ে ধরে তাঁকে প্রণাম করলেন৷ 10 যীশু তাঁদের বললেন, ‘ভয় করো না, তোমরা যাও, আমার ভাইদের গিয়ে বল, তারা য়েন গালীলে যায়, সেখানেই আমার দেখা পাবে৷’ 11 সেই মহিলারা যখন যাচ্ছিলেন, তখন সেই পাহারাদারদের কয়েকজন শহরে গিয়ে যা যা ঘটেছিল তা প্রধান যাজকদের বলল৷ 12 প্রধান যাজকরা ইহুদী নেতাদের সঙ্গে দেখা করে একটা ফন্দি আঁটলো৷ তারা সেই পাহারাদারদের অনেক টাকা দিয়ে বলল, 13 ‘তোমরা লোকদের বলো, ‘আমরা রাতে যখন ঘুমাচ্ছিলাম সেইসময় যীশুর শিষ্যরা এসে তাঁর দেহটা চুরি করে নিয়ে গেছে৷ 14 আর একথা যদি রাজ্যপালের কানে যায়, আমরা তাঁকে বোঝাব আর তোমাদের ঝামেলার হাত থেকে দূরে রাখব৷’ 15 তারা সেইটাকা নিয়ে তাদের য়েমন বলতে শেখানো হয়েছিল তেমনই বলল৷ ইহুদীদের মধ্যে আজও এই গল্পটাই প্রচলিত আছে৷ 16 এবার সেই এগারো জন শিষ্য গালীলে ফিরে গিয়ে যীশু তাঁদের য়েমন বলেছিলেন সেই মতো সেই পর্বতে গেলেন৷ 17 তাঁরা যীশুকে দেখে ভুমিষ্ঠ হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন৷ তবে তাঁদের কয়েকজনের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিল, 18 তখন যীশু কাছে এসে তাদের বললেন, ‘স্বর্গে ও পৃথিবীতে পূর্ণ ক্ষমতা ও কর্ত্তৃত্ব আমাকে দেওযা হয়েছে৷ 19 তাই তোমরা যাও, তোমরা গিয়ে সকল জাতির মানুষকে আমার শিষ্য কর৷ পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে বাপ্তিস্ম দাও৷ 20 আমি তোমাদের য়েসব আদেশ দিয়েছি, সেসব তাদের পালন করতে শেখাও আর দেখ যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন আমি সর্বদাইতোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি৷’
1 ঈশ্বর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের সুচনা: 2 ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তকে য়েমন লেখা আছে, ‘শোন! আমি নিজের সহায়কে তোমার আগে পাঠাবো৷ সে তোমার জন্য পথ প্রস্তুত করবে৷’ মালাখি 3:1 3 ‘মরুপ্রান্তরে একজনের রব ঘোষণা করছে, ‘তোমরা প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত কর, তাঁর জন্য পথ সরল কর৷” যিশাইয় 40:3 4 তাই বাপ্তিস্মদাতা য়োহন এলেন, তিনি মরুপ্রান্তরে লোকদের বাপ্তাইজকরছিলেন৷ তিনি প্রচার করেছিলেন য়েন লোকেরা পাপের ক্ষমা পাবার জন্য মন-ফেরায় ও বাপ্তিস্ম নেয়৷ 5 তাতে যিহূদিযা ও জেরুশালেমের সমস্ত মানুষ তাঁর কাছে য়েতে শুরু করল৷ তারা নিজের নিজের পাপ স্বীকার করে যর্দন নদীতে তাঁর কাছে বাপ্তাইজ হতে লাগল৷ 6 য়োহন উটের লোমের তৈরী কাপড় পরতেন৷ তাঁর কোমরে চামড়ার কোমর বন্ধনী ছিল এবং তিনি পঙ্গপাল ও বনমধু খেতেন৷ 7 তিনি প্রচার করতেন, ‘আমার পরে এমন একজন আসছেন, যিনি আমার থেকে শক্তিমান, আমি নীচু হয়ে তাঁর পায়ের জুতোর ফিতে খোলার য়োগ্য নই৷ 8 আমি তোমাদের জলে বাপ্তাইজ করলাম কিন্তু তিনি তোমাদের পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজ করবেন৷’ 9 সেই সময় যীশু গালীলের নাসরত্ থেকে এলেন আর য়োহন তাঁকে যর্দন নদীতে বাপ্তাইজ করলেন৷ 10 জল থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তিনি দেখলেন, আকাশ দুভাগ হয়ে গেল এবং পবিত্র আত্মা কপোতের মতো তাঁর ওপর নেমে আসছেন৷ 11 আর স্বর্গ থেকে এই রব শোনা গেল, ‘তুমিই আমার প্রিয় পুত্র৷ আমি তোমাতে খুবই সন্তুষ্ট৷’ 12 এরপরই আত্মা যীশুকে প্রান্তরে নিয়ে গেলেন৷ 13 সেখানে তিনি চল্লিশ দিন ছিলেন, সেই সময় শয়তান তাঁকে প্রলুধ্ধ করছিল৷ তিনি বন্য পশুদের সঙ্গে থাকতেন আর স্বর্গদূতরা এসে তাঁর সেবা করতেন৷ 14 য়োহন কারাগারে বন্দী হবার পর যীশু গালীলে গেলেন; আর সেখানে তিনি ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করলেন৷ 15 যীশু বললেন, ‘সময় এসে গেছে; ঈশ্বরের রাজ্য খুব কাছে৷ তোমরা পাপের পথ থেকে মন ফেরাও এবং ঈশ্বরের সুসমাচারে বিশ্বাস কর৷’ 16 গালীল হ্রদের পাশ দিয়ে য়েতে য়েতে যীশু শিমোন এবং তার ভাই আন্দরিয়কে হ্রদে জাল ফেলতে দেখলেন, কারণ তাঁরা মাছ ধরতেন৷ 17 যীশু তাঁদের বললেন, ‘ওহে তোমরা আমার সঙ্গে এস, আমি তোমাদের মাছ নয়, ঈশ্বরের জন্য মানুষ ধরতে শেখাব৷’ 18 আর তখনই শিমোন এবং আন্দরিয় তাঁদের জাল ফেলে রেখে যীশুকে অনুসরণ করলেন৷ 19 এরপর তিনি কিছুটা দূর গালীল হ্রদের পাশ দিয়ে এগিয়ে গেলে সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও তার ভাই য়োহনকে দেখতে পেলেন৷ তাঁরা তাঁদের নৌকায় বসে জাল ঠিক করছিলেন৷ 20 যীশু তাদের ডাকলেন,তাঁরাও সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বাবা সিবদিয়কে ভাড়াটে মজুরদের সঙ্গে নৌকায় রেখে যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 21 এরপর তাঁরা কফরনাহূম শহরে গেলেন৷ পরদিন শনিবার সকালে, অর্থাত্ বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহে গিয়ে লোকদের শিক্ষা দিতে শুরু করলেন৷ 22 যীশুর শিক্ষা শুনে সবাই আশ্চর্য় হলেন, কারণ তিনি ব্যবস্থার শিক্ষকের মতো নয় কিন্তু সম্পূর্ণ কর্ত্তৃত্ব সম্পন্ন ব্যক্তির মতোই শিক্ষা দিতেন৷ 23 সেই সমাজ-গৃহে হঠাত্ অশুচি আত্মায় পাওযা এক ব্যক্তি চেঁচিয়ে বলল, 24 ‘হে নাসরতীয় যীশু! আপনি আমাদের কাছে কি চান? আপনি কি আমাদের ধ্বংস করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে, আপনি ঈশ্বরের সেই পবিত্র ব্যক্তি!’ 25 কিন্তু যীশু তাকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘চুপ কর! এই লোকটার ভেতর থেকে বেরিয়ে এসো!’ 26 সঙ্গে সঙ্গে সেই অশুচি আত্মা ঐ লোকটাকে দুমড়ে মুচড়ে প্রচণ্ড জোরে চিত্কার করে লোকটির মধ্যে থেকে বেরিয়ে এল৷ 27 এতে প্রত্যেকে অবাক হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, ‘এ কি ব্যাপার? এটা কি একটা নতুন শিক্ষা? সম্পূর্ণ কর্ত্তৃত্বের সঙ্গে তিনি শিক্ষা দেন, এমনকি অশুচি আত্মাদের আদেশ করেন এবং তারা তাঁর আদেশ মানে৷’ 28 আর গালীলের সমস্ত অঞ্চলে তাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ল৷ 29 তখন যীশু ও তাঁর শিষ্যরা সমাজ-গৃহ ছেড়ে যাকোব এবং য়োহনকে সঙ্গে নিয়ে সোজা শিমোন এবং আন্দরিয়ের বাড়িতে গেলেন৷৷ 30 সেখানে শিমোনের শাশুড়ী জ্বরে শয্যাশায়ী ছিলেন৷ তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে শিমোনের শাশুড়ীর জ্বরের কথা যীশুকে বললেন৷ 31 যীশু তাঁর কাছে গেলেন এবং তাঁর হাত ধরে উঠিয়ে বসালেন, সঙ্গে সঙ্গে তাঁর জ্বর ছেড়ে গেল এবং তিনি তাঁদের সেবা করতে লাগলেন৷ 32 সূর্য় অস্ত যাওযার পর সন্ধ্যে হলে, লোকেরা অনেক অসুস্থ ও ভূতে পাওযা লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ 33 আর শহরের সমস্ত লোক সেই বাড়ির দরজায় জমা হল৷ 34 তিনি বহু অসুস্থ রোগীকে নানা প্রকার রোগ থেকে সুস্থ করলেন এবং লোকদের মধ্যে থেকে বহু ভূত তাড়ালেন৷ কিন্তু তিনি ভুতদের কোন কথা বলতে দিলেন না, কারণ তারা তাঁকে চিনত৷ 35 পরের দিন ভোর হবার আগে, রাত থাকতে থাকতে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লেন আর নির্জন স্থানে গিয়ে প্রার্থনায় কাটালেন৷ 36 শিমোন ও তাঁর সঙ্গী যাঁরা যীশুর সঙ্গে ছিলেন, তাঁকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়লেন৷ 37 পরে যীশুকে দেখতে পেয়ে বললেন, ‘সবাই আপনার খোঁজ করছে৷’ 38 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘চল, আমরা অন্য শহরে যাই৷ য়েন সেখানেও আমি প্রচার করতে পারি, কারণ সেই জন্যই আমি এসেছি৷’ 39 তাই তিনি সমস্ত গালীল প্রদেশে বিভিন্ন সমাজ-গৃহে গিয়ে প্রচার করতে ও ভূত ছাড়াতে লাগলেন৷ 40 একদিন এক কুষ্ঠরোগী তাঁর কাছে এসে হাঁটু গেড়ে বিনীতভাবে তাঁর সাহায্য চাইল৷ সে যীশুকে বলল, ‘আপনি ইচ্ছে করলে আমাকে ভাল করে দিতে পারেন৷’ 41 যীশু তার প্রতি মমতায় পূর্ণ হয়ে হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করে বললেন, ‘আমি তা-ই চাই, তুমি ভাল হয়ে যাও৷’ 42 আর সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ রোগ তাকে ছেড়ে গেল এবং সে সুস্থ হল৷ 43 যীশু তাকে তখনই বিদায় দিলেন৷ 44 তিনি তাকে দৃঢ়ভাবে বললেন, ‘দেখ, একথা কাউকে বলো না, কিন্তু যাজকের কাছে নিজেকে দেখাও এবং কুষ্ঠরোগ থেকে সুস্থ হওযার জন্য মোশির বিধান অনুযায়ী ঈশ্বরকে উপহার দাও, এতে সকলে জানতে পারবে য়ে তুমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছ৷’ 45 কিন্তু সে বাইরে গিয়ে তার সুস্থ হওযার কথা এত বেশী প্রচার করতে ও চারদিকে বলতে লাগল য়ে যীশু আর প্রকাশ্যে কোন শহরে প্রবেশ করতে পারলেন না৷ কাজেই তিনি শহরের বাইরে নির্জনে থেকে গেলেন আর লোকরা চারদিক থেকে তাঁর কাছে আসতে লাগল৷
1 কয়েকদিন পরে তিনি কফরনাহূমে ফিরে এলে এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল য়ে তিনি বাড়ি ফিরে এসেছেন৷ 2 এর ফলে এত লোক জড় হল য়ে সেখানে তিল ধারণেরও জায়গা রইল না, এমনকি দরজার বাইরেও এতটুকু জায়গা রইল না৷ তিনি তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করতে লাগলেন৷ 3 সেই সময় চারজন লোক খাটে করে এক পঙ্গুকে তাঁর কাছে নিয়ে এল৷ 4 তারা সেই পঙ্গু লোকটিকে যীশুর কাছে নিয়ে য়েতে পারল না, তাই যীশু য়েখানে ছিলেন সেখানকার ছাদের কিছু টালি খুলে ফাঁকা করে, ঠিক তাঁর সামনে খাটিযা সমেত সেই পঙ্গু লোকটিকে নামিয়ে দিল৷ 5 তাদের বিশ্বাস দেখে যীশু সেই পঙ্গু লোকটিকে বললেন, ‘বাছা, তোমার সব পাপের ক্ষমা হল৷’ 6 সেখানে কিছু ব্যবস্থার শিক্ষক বসে ছিলেন, তাঁরা মনে মনে ভাবতে লাগলেন, 7 ‘এ লোকটি এমন কথা বলছে কেন? এ য়ে ঈশ্বর নিন্দা করছে; ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারেন?’ 8 যীশু নিজের আত্মায় ব্যবস্থার শিক্ষকদের মনের কথা জানতে পেরে তখনই তাদের বললেন, ‘তোমরা এসব কথা ভাবছ কেন? 9 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল’ অথবা ওঠ, তোমার খাটিযা নিয়ে চলে যাও?’ 10 কিন্তু পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা য়ে মানবপুত্রের আছে এটা আমি তোমাদের প্রমাণ করে দেব৷’ তাই তিনি সেই পঙ্গু লোকটিকে বললেন, 11 ‘আমি তোমায় বলছি ওঠ! তোমার খাটিযাটি তুলে নিয়ে তোমার ঘরে চলে যাও৷’ 12 সে উঠে দাঁড়াল এবং সঙ্গে সঙ্গে তার খাটিযাটি তুলে নিয়ে সকলের সামনে দিয়ে হেঁটে বেরিয়ে গেল৷ এতে সকলে আশ্চর্য হয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলল, ‘এর আগে আমরা এমন কখনও দেখিনি৷’ 13 এরপর তিনি আবার হ্রদের ধারে ফিরে গেলে, সমস্ত লোক তাঁর কাছে এল, আর তিনি তাদের শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ 14 পরে তিনি পথে য়েতে য়েতে দেখলেন, এক কর আদায়কারী, আলফেয়ের ছেলে লেবি কর আদায়ের ঘরে বসে আছেন৷ তিনি তাকে বললেন, ‘এস, আমার সাথে চল৷’ তা শুনে লেবি উঠে পড়লেন এবং যীশুর সঙ্গে গেলেন৷ 15 পরে তিনি লেবির বাড়িতে এসে খেতে বসলেন, আর অনেক কর আদায়কারী এবং মন্দ লোক যীশুর ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল, কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই তাঁর অনুগামী ছিল৷ 16 কিন্তু ফরীশী দলের ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুকে কর আদায়কারী ও মন্দ লোকদের সঙ্গে খেতে দেখে তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘যীশু কর আদায়কারী ও মন্দ লোকদের সঙ্গে খেতে বসেন কেন?’ 17 এই কথা শুনে যীশু তাদের বললেন, ‘সুস্থ লোকের চিকিত্সকের প্রযোজন নেই, কিন্তু রোগীদের জন্যই চিকিত্সকের প্রযোজন৷ আমি ধার্মিকদের নয়, কিন্তু পাপীদের ডাকতে এসেছি৷’ 18 সেই সময় য়োহনেরশিষ্যরা এবং ফরীশীরা উপোস করছিলেন৷ তাই কিছু লোক যীশুর কাছে এসে তাঁকে বলল, ‘য়োহনের এবং ফরীশীদের শিষ্যরা উপোস করে; কিন্তু আপনার শিষ্যরা উপোস করে না কেন?’ 19 যীশু তাদের বললেন, ‘বর সঙ্গে থাকতে কি বিয়ে বাড়ির অতিথিরা উপোস করতে পারে? য়েহেতু বর তাদের সঙ্গে আছে তাই তারা উপোস করে না৷ 20 কিন্তু এমন সময় আসবে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওযা হবে; আর সেই দিন তারা উপোস করবে৷ 21 ‘পুরানো কাপড়ে কেউ নতুন কাপড়ের টুকরো দিয়ে তালি দেয় না; তালি দিলে সেই নতুন কাপড়টি পুরানো কাপড় থেকে ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে আর ছেঁড়া জায়গাটি আরো বড় হয়ে যায়৷ 22 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ নতুন দ্রাক্ষারস ঢালে না, ঢাললে থলি ফেটে যায়, তাতে দ্রাক্ষারস এবং চামড়ার থলি দুটোই নষ্ট হয়ে যায়৷ নতুন দ্রাক্ষারসের জন্য নতুন থলিরই প্রযোজন৷’ 23 কোন এক বিশ্রামবারে যীশু শস্য ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন; আর তাঁর শিষ্যেরা য়েতে য়েতে শস্যের শীষ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছিলেন৷ 24 এতে ফরীশীরা তাঁকে বলল, ‘দেখ, বিশ্রামবারে তোমার শিষ্যেরা এমন কাজ কেন করছে, যা করা উচিত নয়?’ 25 তিনি তাদের বললেন, ‘দাযূদ ও তাঁর সঙ্গীরা খাবারের অভাবে ক্ষুধার্ত হয়ে কি করেছিলেন তোমরা কি পড় নি? 26 অবিযাথর যখন প্রধান যাজক ছিলেন সেই সময় দাযূদ কেমন করে ঈশ্বরের গৃহে গিয়ে য়ে রুটি যাজক ছাড়া অন্য আর কারো খাওযা বিধি-সম্মত ছিল না, তা নিজে খেয়েছিলেন ও তাঁর সঙ্গীদের খাইয়েছিলেন?’ 27 যীশু তাদের আরো বললেন, ‘মানুষের জন্যই বিশ্রামবারের সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু বিশ্রামবারের জন্য মানুষ সৃষ্ট হয়নি৷ 28 তাই মানবপুত্রবিশ্রামবারেরও প্রভু৷’
1 আবার তিনি সমাজ-গৃহে গেলেন৷ সেখানে একটা লোক ছিল, যার একটা হাত পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল৷ 2 তিনি লোকটিকে সুস্থ করেন কি না, তা দেখার জন্য কিছু লোক তাঁর দিকে নজর রাখল, যাতে তাঁর দোষ ধরতে পারে৷ 3 যীশু সেই লোকটিকে, যার হাত পঙ্গু হয়ে গেছে তাকে বললেন, ‘সকলের সামনে এসে দাঁড়াও৷’ 4 পরে তিনি তাদের বললেন, ‘বিশ্রামবারে লোকের উপকার, না ক্ষতি করা, কোনটি বিধিসম্মত? জীবন রক্ষা করা না জীবন নষ্ট করা, কোনটি বিধিসম্মত? কিন্তু তারা চুপ করে থাকল৷ 5 তখন তিনি ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাদের চারিদিকে তাকালেন এবং তাদের কঠোর মনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সেই লোকটিকে বললেন, ‘তোমার হাত বাড়াও৷’ সে তার হাত বাড়িয়ে দিলে তার হাত ভাল হয়ে গেল৷ 6 ফরীশীরা বেরিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হেরোদীয়দের সাথে যীশুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে লাগল, য়ে কেমন করে তাঁকে হত্যা করতে পারে৷ 7 যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে গালীল হ্রদের দিকে গেলেন৷ গালীল, যিহূদিযা, জেরুশালেম, ইদোম এমন কি যর্দন নদীর অপর পারে সোর ও সীদোন থেকে বহুলোক তাঁদের পিছনে পিছনে এল৷ 8 তিনি য়ে সমস্ত অলৌকিক কাজ করেছিলেন তা শুনে এই বিশাল জনতা তাঁর কাছে এসেছিল৷ 9 যাতে ভীড়ের চাপ তাঁর ওপরে না পড়ে, তাই তিনি শিষ্যদের তাঁর জন্য একটা ছোট নৌকা প্রস্তুত রাখতে বললেন৷ 10 তিনি বহুলোককে সুস্থ করেছিলেন, তাই সমস্ত রোগী তাঁকে স্পর্শ করার জন্য ঠেলাঠেলি করছিল৷ 11 অশুচি আত্মায় পাওযা রোগীরা তাঁকে দেখতে পেলেই তাঁর পায়ের সামনে পড়ে চেঁচিয়ে বলত, ‘আপনি ঈশ্বরের পুত্র৷’ 12 কিন্তু তিনি তাদের কঠোরভাবে তিরস্কার করতেন যাতে তারা তাঁর পরিচয় না দেয়৷ 13 তারপর তিনি পাহাড়ের ওপরে উঠে নিজের ইচ্ছামতো কিছু লোককে কাছে ডাকলে তাঁরা তাঁর কাছে এলেন৷ 14 আর তিনি বারোজনকে প্রেরিত পদে নিযোগ করলেন য়েন তাঁরা তাঁর সাথে সাথে থাকে এবং বাক্য প্রচারের জন্য য়েন তিনি তাঁদের পাঠাতে পারেন৷ 15 তাঁদের তিনি ভূত ছাড়াবার ক্ষমতাও দিলেন৷ 16 তিনি য়ে বারোজনকে মনোনীত করেন তাঁদের নাম শিমোন যাকে তিনি নাম দিলেন পিতর; 17 যাকোব যিনি সিবদিয়ের ছেলে এবং যাকোবের ভাই য়োহন; যাদের তিনি নাম দিয়েছিলেন, বোনেরগশ যার অর্থ ‘মেঘধ্বনির পুত্র৷’ 18 আন্দরিয়, ফিলিপ, বর্থলময়, মথি, থোমা, আলফেয়ের ছেলে যাকোব, থদ্দেয়, দেশ-ভক্ত,দলের শিমোন 19 এবং যিহূদা ঈষ্করিযোতীয় য়ে যীশুকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল৷ 20 তিনি ঘরে ফিরে এলে সেখানে আবার এত লোকের ভীড় হল, য়ে তাঁরা খেতেও সময় পেলেন না৷ 21 যীশুর বাড়ির লোকরা এইসব বিষয় জানতে পেরে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য এলেন, কারণ লোকরা বলছিল য়ে তিনি পাগল হয়ে গেছেন৷ 22 জেরুশালেম থেকে য়ে ব্যবস্থার শিক্ষকরা এসেছিলেন তাঁরা বললেন, ‘যীশুকে বেলসবুবে পেয়েছে, ভুতদের রাজার সাহায্যে যীশু ভূত ছাড়ায়৷’ 23 তখন তিনি তাদের কাছে ডেকে দৃষ্টান্ত দিয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘কেমন করে শয়তান নিজে শয়তানকে ছাড়াতে পারে? 24 কোন রাজ্য যদি নিজের বিপক্ষে নিজে ভাগ হয়ে যায়, তবে সেই রাজ্য টিকতে পারে না৷ 25 আবার কোন পরিবারে যদি পারিবারিক কলহ শুরু হয়, তবে সেই পরিবার এক থাকতে পারে না৷ 26 আবার শয়তান যদি নিজের বিরুদ্ধেই নিজে দাঁড়ায় তবে সেও টিকতে পারে না, তার শেষ হবেই৷ 27 কেউই একজন শক্তিশালী মানুষের বাড়িতে ঢুকে তার দ্রব্য লুঠ করতে পারে না, যদি না সে সেই শক্তিশালী লোকটিকে আগে বাঁধে৷ আর বাঁধার পরই সে তার ঘর লুঠ করতে পারে৷ 28 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মানুষ য়ে সমস্ত পাপ এবং ঈশ্বরের নিন্দা করে সেই সমস্ত পাপের ক্ষমা হতে পারে; 29 কিন্তু যদি কেউ পবিত্র আত্মার নিন্দা করে তবে তার ক্ষমা নেই, তার পাপ চিরস্থাযী৷’ 30 তিনি এইসব কথা ব্যবস্থার শিক্ষকদের বললেন, কারণ তারা বলেছিল, তাঁকে অশুচি আত্মায় পেয়েছে৷ 31 সেই সময় তাঁর মা ও ভাইরা তাঁর কাছে এলেন এবং বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁরা যীশুকে লোক মারফত্ ডেকে পাঠালেন৷ 32 তখন তাঁর চারদিকে ভীড় করে য়ে লোকরা বসেছিল, তারা তাঁকে বলল, ‘দেখুন, আপনার মা, ভাই ও বোনেরা আপনার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছেন৷’ 33 তার উত্তরে তিনি তাদের বললেন, ‘কে আমার মা? আমার ভাইরা বা কারা?’ 34 যাঁরা তাঁকে ঘিরে বসেছিল তাদের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, ‘এরাই আমার মা ও ভাই৷ 35 য়ে কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার মা, ভাই ও বোন৷’
1 পরে আবার তিনি হ্রদের ধারে লোকদের কাছে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ তাতে এত লোক তাঁর কাছে জড়ো হল য়ে, তিনি একটা নৌকায় উঠে বসলেন আর হ্রদের পাড়ে সমস্ত লোকরা এসে ভীড় করল৷ 2 তখন দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা দিতে লাগলেন, বললেন, 3 ‘শোন! এক চাষী বীজ বুনতে গেল৷ 4 বোনার সময় কতকগুলো বীজ পথের পাশে পড়ল, তাতে পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেলল৷ 5 আবার কতকগুলো বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, সেখানে বেশী মাটি ছিল না৷ বেশী মাটি না থাকাতে খুব তাড়াতাড়ি বীজ থেকে অঙ্কুর বের হল: 6 কিন্তু সূর্য় ওঠার সাথে সাথে অঙ্কুরগুলো শুকিয়ে গেল, কারণ এর শেকড় গভীরে ছিল না৷ 7 কতকগুলো বীজ কাঁটাঝোপের মধ্যে গিয়ে পড়ল, কাঁটাবন বেড়ে গিয়ে চারাগাছগুলোকে বাড়তে দিল না, ফলে সে গাছে কোন ফল হল না৷ 8 কতকগুলো বীজ ভাল জমিতে পড়ল এবং তার থেকে অঙ্কুর বের হল, আর তা বেড়ে ফল দিল৷ যা বোনা হয়েছিল তার ত্রিশ গুণ, ষাট গুণ ও একশো গুণ ফল দিল৷’ 9 তিনি তাদের বললেন, ‘যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক৷’ 10 পরে যখন তিনি একা ছিলেন, তাঁর শিষ্যেরা সেই বারোজন প্রেরিতের সাথে তাঁকে তাঁর দৃষ্টান্তের অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন৷ 11 তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ় তত্ত্ব তোমাদের বলা হয়েছে; কিন্তু যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের বাইরের লোক তাদের কাছে সব কিছুই দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বলা হচ্ছে৷ 12 যাতে, ‘তারা দেখবে কিন্তু উপলধ্ধি করতে পারবে না৷ তারা শুনবে অথচ বুঝবে না, পাছে তারা ফিরে আসে ও তাদের ক্ষমা করা যায়৷” যিশাইয় 6:9-10 13 তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা কি এই দৃষ্টান্তের অর্থ বুঝতে পার না? তবে কেমন করে অন্য সব দৃষ্টান্ত বুঝবে? 14 সেই চাষী হল সেই লোক, য়ে ঈশ্বরের শিক্ষা মানুষেব কাছে নিয়ে যায়৷ 15 কিছু লোক সেই পথের পাশে পড়া বীজের মতো, যাদের মধ্যে ঈশ্বরের শিক্ষা বোনা যায়, আর তারা শোনার সঙ্গে সঙ্গে শয়তান এসে তাদের মন থেকে য়ে শিক্ষা বোনা হয়েছিল তা নিয়ে যায়৷ 16 কিছু লোক সেই পাথুরে জমিতে পড়া বীজের মতো, যাঁরা শিক্ষা শোনার সাথে সাথে তা আনন্দে গ্রহণ করে৷ 17 কিন্তু তাদের হৃদয়ের গভীরে মূল যায় না, তারা অল্প সময় স্থির থাকে৷ সেই শিক্ষা গ্রহণের জন্য য়েই তাদের ওপর কষ্ট অথবা তাড়না আসে, অমনি তারা সেই পথ ছেড়ে দেয়৷ 18 কিছু লোক সেই কাঁটাঝোপে বোনা বীজের মতো যাঁরা শিক্ষা শোনে, 19 কিন্তু সংসারের চিন্তা, অর্থের মাযা ও অন্যান্য বিষয়ের অভিলাষ মনের ভেতর গিয়ে ঐ বাক্য চেপে রাখে, আর তাই তাতে কোন ফল হয় না৷ 20 আর কিছু লোক সেই উর্বর জমিতে পড়া বীজের মত, যাঁরা সেই বাক্য সকল শুনে গ্রহণ করে এবং ত্রিশ গুণ, কেউ ষাট গুণ ও কেউ শত গুণ ফল উত্পন্ন করে৷’ 21 তিনি তাদের আরো বললেন, ‘প্রদীপ জ্বেলে কি কেউ ধামা চাপা দিয়ে বা খাটের নীচে রাখে? বাতিদানের ওপরে রাখবার জন্য কি তা জ্বালে না? 22 কারণ এমন গোপন কিছুই নেই যা প্রকাশ করা যাবে না, এমন লুকানো কিছু নেই যা প্রকাশ হবে না৷ 23 যদি তোমাদদের কান থাকে তবে শোন! 24 ‘তারপর তিনি তাদের বললেন, তোমরা যা শুনছ সেই বিষয়ে মনোয়োগ দাও৷ য়ে দাঁড়ি-পাল্লায় তুমি মাপবে সেই দাঁড়িপাল্লায় তোমাদের জন্যও মেপে দেওযা হবে, এমনকি আরো বেশী দেওযা হবে৷ 25 কারণ যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে; আর যার নেই তার যা আছে তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওযা হবে৷’ 26 তিনি আরো বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য এইবকম, একজন লোক জমিতে বীজ ছড়াল৷ 27 পরে সে দিন রাত ঘুমিয়ে জেগে উঠল; ইতিমধ্যে ঐ বীজ থেকে অঙ্কুর হল ও বাড়তে লাগল; কেমন করে বাড়ছে সে তা জানল না৷ 28 জমিতে নিজে থেকে চারা গাছ বড় হতে লাগল৷ প্রথমে অঙ্কুর, তারপর শীষ এবং শীষের মধ্যে সম্পূর্ণ শস্য দানা হল৷ 29 সেই ফসল পাকলে পরে সে সাথে সাথে কাস্তে লাগাল কারণ ফসল কাটার সময় হয়েছে৷’ 30 যীশু বললেন, ‘আমরা কিসের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যের তুলনা করব? কোন্ দৃষ্টান্তের সাহায্যেই বা তা বোঝাব? 31 এটা হল সরষে দানার মতো, সেই বীজ মাটিতে বোনার সময় মাটির সমস্ত বীজের মধ্যে সবচেয়ে ছোট; 32 কিন্তু রোপণ করা হলে তা বাড়তে বাড়তে সমস্ত চারাগাছের থেকে বড় হয়ে ওঠে এবং তাতে লম্বা লম্বা ডালপালা গজায় যাতে পাখিরা তার ছাযার নীচে বাসা বাঁধতে পারে৷’ 33 এইরকম আরও অনেক দৃষ্টান্তের সাহায্যে তিনি তাদের কাছে শিক্ষা দিতেন; তিনি তাদের বোঝবার ক্ষমতা অনুসারে শিক্ষা দিতেন, 34 দৃষ্টান্ত ছাড়া তাদের কিছুই বলতেন না; কিন্তু শিষ্যদের সঙ্গে একা থাকার সময়, তিনি তাদের সমস্ত কিছু বুঝিয়ে বলতেন৷ 35 ঐদিন সন্ধ্যে হলে তিনি শিষ্যদের বললেন, ‘চল, আমরা হ্রদের ওপারে যাই৷’ 36 তখন তাঁরা লোকদের বিদায় দিয়ে, তিনি নৌকায় য়ে অবস্থায় বসেছিলেন, তেমনিভাবেই তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, সেখানে আরও নৌকা তাদের সঙ্গে ছিল৷ 37 দেখতে দেখতে প্রচণ্ড ঝড় উঠল এবং ঢেউগুলো নৌকায় এমন আছড়ে পড়তে লাগল য়ে নৌকা জলে ভরে উঠতে লাগল৷ 38 সেইসময় যীশু নৌকার পিছন দিকে বালিশে মাথা দিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন৷ তাঁরা তাঁকে জাগিয়ে বললেন, ‘গুরু, আপনার কি চিন্তা হচ্ছে না য়ে আমরা সকলে ডুবতে বসেছি?’ 39 তখন তিনি জেগে উঠে ঝড়কে ধমক দিলেন ও সমুদ্রকে বললেন, ‘থাম!শান্ত হও!’ সঙ্গে সঙ্গে ঝড় থেমে গেল, আর সবকিছু শান্ত হল৷ 40 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা এত ভীতু কেন? তোমাদের কি এখনও বিশ্বাস হয় নি?’ 41 কিন্তু শিষ্যরা আরও ভয় পেয়ে পরস্পরের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, ‘ইনি তবে কে? এমন কি ঝড় এবং সমুদ্রও এঁর কথা শোনে৷’
1 এরপর যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা হ্রদের ওপারে গেরাসেনীদের দেশে এলেন৷ 2 তিনি নৌকা থেকে নামার সাথে সাথে একটি লোক কবরস্থান থেকে তাঁর সামনে এল, তাকে অশুচি আত্মায় পেয়েছিল৷ 3 সে কবরস্থানে বাস করত, কেউ তাকে শেকল দিয়েও বেঁধে রাখতে পারত না৷ 4 লোকে বারবার তাকে বেড়ী ও শেকল দিয়ে বাঁধত; কিন্তু সে শেকল ছিঁড়ে ফেলত এবং বেড়ী ভেঙ্গে টুকরো করত, কেউ তাকে বশ করতে পারত না৷ 5 সে রাত দিন সব সময় কবরখানা ও পাহাড়ি জায়গায় থাকত এবং চিত্কার করে লোকদের ভয় দেখাত এবং ধারালো পাথর দিয়ে নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করত৷ 6 সে দূর থেকে যীশুকে দেখে ছুটে এসে প্রণাম করল৷ 7 আর খুব জোরে চেঁচিয়ে বলল, ‘হে ঈশ্বরের সবচেয়ে মহান পুত্র যীশু, আপনি আমায় নিয়ে কি করতে চান? আমি আপনাকে ঈশ্বরের দিব্যি দিচ্ছি, আমাকে যন্ত্রণা দেবেন না!’ কারণ তিনি তাকে বলেছিলেন, ‘ওহে অশুচি আত্মা, এই লোকটি থেকে বেরিয়ে যাও৷’ 8 9 তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার নাম কি?’ সে তাঁকে বলল, ‘আমার নাম বাহিনী, কারণ আমরা অনেকগুলো আছি৷’ 10 তখন সে যীশুর কাছে মিনতি করতে লাগল, য়েন তিনি তাদের সেই অঞ্চল থেকে তাড়িয়ে না দেন৷ 11 সেখানে পর্বতের পাশে একদল শুযোর চরছিল, 12 আর তারা (অশুচি আত্মারা) যীশুকে অনুনয় করে বলল, ‘আমাদের এই শুযোরের পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন৷’ 13 তিনি তাদের অনুমতি দিলে সেই অশুচি আত্মারা বের হয়ে শুযোরদের মধ্যে ঢুকে পড়ল৷ তাতে সেই শুযোরের পাল, কমবেশী দুহাজার শুযোর দৌড়ে ঢালু পাড় দিয়ে হ্রদে গিয়ে পড়ল এবং ডুবে মরল৷ 14 তখন যারা শুযোরগুলোকে চরাচ্ছিল তারা পালিয়ে গেল এবং শহরে ও খামার বাড়িগুলিতে গিয়ে খবর দিল৷ তখন কি হয়েছে তা দেখার জন্য লোকরা এল৷ 15 তারা যীশুর কাছে এসে দেখল, সেই অশুচি আত্মায় পাওযা লোকটি, যাকে ভূতে পেয়েছিল, সে কাপড় পরে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় বসে আছে৷ তাতে তারা ভয় পেল, 16 আর যাঁরা ঐ অশুচি আত্মায় পাওযা লোকটির ও শুযোরের পালের ঘটনা দেখেছিল তারা সমস্ত ঘটনা যা ঘটেছিল তা বলল৷ 17 তখন তারা যীশুকে অনুনয় করে তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে য়েতে বলল৷ 18 পরে তিনি নৌকায় উঠছেন, এমন সময় য়ে লোকটিকে ভূতে পেয়েছিল, সে তাঁকে অনুনয় করে বলল, য়েন সে তাঁর সঙ্গে থাকতে পারে৷ 19 কিন্তু যীশু তাকে অনুমতি দিলেন না, বরং বললেন, ‘তুমি তোমার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের কাছে ফিরে যাও আর ঈশ্বর তোমার জন্য যা যা করেছেন ও তোমার প্রতি য়ে দযা দেখিয়েছেন তা তাদের বুঝিয়ে বল৷’ 20 তখন সে চলে গেল এবং প্রভু তার জন্য যা যা করেছেন, তা দিকাপলি অঞ্চলে প্রচার করতে লাগল, তাতে সকলে অবাক হয়ে গেল৷ 21 পরে যীশু নৌকায় আবার হ্রদ পার হয়ে অন্য পাড়ে এলে অনেক লোক তাঁর কাছে ভীড় করল৷ তিনি হ্রদের তীরেই ছিলেন৷ 22 আর সমাজগৃহের নেতাদের মধ্যে যাযীর নামে এক ব্যক্তি এসে তাঁকে দেখে তাঁর পায়ে পড়লেন 23 এবং অনেক অনুনয় করে তাঁকে বললেন, ‘আমার মেয়ে মর মর, আপনি এসে মেয়েটির ওপর হাত রাখুন যাতে সে সুস্থ হয় ও বাঁচে৷’ 24 তখন তিনি তার সঙ্গে গেলেন৷ বহুলোক তাঁর পেছন পেছন চলল, আর তাঁর চারদিকে ঠেলাঠেলি করতে লাগল৷ 25 একটি স্ত্রীলোক বারো বছর ধরে রক্তস্রাব রোগে ভুগছিল৷ 26 অনেক চিকিত্সকের সাহায্য নিয়ে এবং সর্বস্ব ব্যয় করেও এতটুকু ভাল না হয়ে বরং আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছিল৷ 27 সে যীশুর বিষয় শুনে ভীড়ের মধ্যে তাঁর পিছন দিকে এসে তাঁর পোশাক স্পর্শ করল৷ 28 সে মনে মনে ভেবেছিল, ‘যদি কেবল তাঁর পোশাক ছুঁতে পারি, তবেই আমি সুস্থ হব৷’ 29 আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর রক্তস্রাব বন্ধ হল এবং সে তার শরীরে অনুভব করল য়ে সেই রোগ থেকে সুস্থ হয়েছে৷ 30 যীশু সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলেন য়ে তাঁর মধ্য থেকে শক্তি বের হয়েছে৷ তাই ভীড়ের মধ্যে মুখ ফিরিয়ে বললেন, ‘কে আমার পোশাক স্পর্শ করেছে?’ 31 তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, ‘আপনি দেখছেন, লোকরা আপনার ওপরে ঠেলাঠেলি করে পড়ছে, তবু বলছেন, ‘কে আমাকে স্পর্শ করল?” 32 কিন্তু য়ে এই কাজ করেছে, তাকে দেখবার জন্য তিনি চারদিকে দেখতে লাগলেন৷ 33 তখন সেই স্ত্রীলোকটি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তার প্রতি কি করা হয়েছে তা জানাতে তাঁর পায়ে পড়ল এবং সমস্ত সত্যি কথা তাঁকে বলল৷ 34 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘তোমার বিশ্বাস তোমাকে ভাল করেছে, শান্তিতে চলে যাও ও তোমার রোগ থেকে সুস্থ থাক৷’ 35 তিনি এই কথা বলছেন, সেইসময় সমাজগৃহের নেতা যাযীরের বাড়ি থেকে লোক এসে বলল, ‘আপনার মেয়ে মারা গেছে, গুরুকে আর কষ্ট দেবার কোন কারণ নেই৷’ 36 কিন্তু যীশু তাদের কথায় কান না দিয়ে যাযীরকে বললেন, ‘ভয় করো না, কেবল বিশ্বাস রাখো৷’ 37 আর তিনি পিতর, যাকোব ও যাকোবের ভাই য়োহনকে ছাড়া আর কাউকে নিজের সঙ্গে য়েতে দিলেন না৷ 38 পরে তারা সমাজগৃহের নেতার বাড়িতে এসে দেখলেন সেখানে গোলমাল হচ্ছে, কেউ কেউ শোকে চিত্কার করে কাঁদছে ও বিলাপ করছে৷ 39 তিনি ভিতরে গিয়ে তাদের বললেন, ‘তোমরা গোলমাল করছ ও কাঁদছ কেন? মেয়েটি তো মরে নি, সে ঘুমিয়ে আছে৷’ 40 এতে তারা তাঁকে উপহাস করল৷ কিন্তু তিনি সকলকে বাইরে বার করে দিয়ে, মেয়েটির বাবা, মা ও নিজের শিষ্যদের নিয়ে য়েখানে মেয়েটি ছিল সেখানে গেলেন৷ 41 আর মেয়েটির হাত ধরে বললেন, ‘টালিথা কুমী!’ যার অর্থ ‘খুকুমনি, আমি তোমাকে বলছি ওঠ!’ 42 মেয়েটি সঙ্গে সঙ্গে উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল৷ তার বয়স তখন বারো বছর ছিল৷ তাই দেখে তারা সকলে খুব আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 43 পরে তিনি তাদের এই দৃঢ় আদেশ দিলেন যাতে কেউ এটা জানতে না পারে; আর মেয়েটিকে কিছু খেতে দিতে বললেন৷
1 পরে যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেখান থেকে নিজের শহরে চলে এলেন৷ 2 এরপর তিনি বিশ্রামবারে সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে লাগলেন; আর সমস্ত লোক তাঁর শিক্ষা শুনে আশ্চর্য হল৷ তারা বলল, ‘এ কোথা থেকে এ সমস্ত বিজ্ঞতা অর্জন করল? এ কি করে এমন বিজ্ঞতার সঙ্গে কথা বলে? কি করেই বা এইসব অলৌকিক কাজ করে? 3 এ তো সেই ছুতোর মিস্ত্রি এবং মরিয়মের ছেলে; যাকোব, য়োসি, যিহূদা ও শিমোনের ভাই; তাই নয় কি? আর এর বোনেরা কি আমাদের মধ্যে নেই?’ এইসব চিন্তা তাদের মাথায় আসায় তারা তাঁকে গ্রহণ করতে পারল না৷ 4 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘নিজের শহর ও নিজের আত্মীয় স্বজন এবং পরিজনদের মধ্যে ভাববাদী সম্মানিত হন না৷’ 5 তিনি সেখানে কোন অলৌকিক কাজ করতে পারলেন না৷ শুধু কয়েকজন রোগীর ওপর হাত রেখে তাদের সুস্থ করলেন৷ 6 তারা য়ে তাঁর ওপর বিশ্বাস করল না, এতে তিনি আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ এর পরে তিনি চারদিকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিক্ষা দিলেন৷ 7 পরে তিনি সেই বারোজনকে ডেকে দুজন দুজন করে তাঁদের পাঠাতে শুরু করলেন এবং তাঁদের অশুচি আত্মার ওপরে ক্ষমতা দান করলেন৷ 8 তিনি তাঁদের আদেশ দিলেন য়েন তাঁরা পথে চলবার জন্য একটা লাঠি ছাড়া আর কিছু সঙ্গে না নেয় এবং রুটি, থলে এমনকি কোমরবন্ধনীতে কোন টাকাপয়সা নিতেও বারণ করলেন৷ 9 তবে বললেন, পায়ে জুতো পরবে কিন্তু কোন বাড়তি জামা নেবে না৷ 10 তিনি আরও বললেন, তোমরা য়ে কোন শহরে য়ে বাড়িতে ঢুকবে, সেই শহর না ছাড়া পর্য়্ন্ত সেই বাড়িতে থেকো৷ 11 যদি কোন শহরের লোক তোমাদের গ্রহণ না করে বা তোমাদের কথা না শোনে তবে সেখান থেকে চলে যাবার সময় তাদের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যের জন্য নিজের নিজের পায়ের ধূলো সেখানে ঝেড়ে ফেলো৷ 12 পরে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেন, প্রচার করতে আরন্ভ করলেন এবং লোকদের মন-ফেরাতে বললেন৷ 13 তাঁরা অনেক ভূত ছাড়ালেন ও অনেক লোককে তেল মাখিয়ে সুস্থ করলেন৷ 14 যীশুর সুনাম চারদিকে এমন ছড়িয়ে পড়েছিল, য়ে রাজা হেরোদওসে কথা শুনতে পেলেন৷ কিছু লোক বলল, ‘বাপ্তিস্মদাতা য়োহন বেঁচে উঠেছেন, আর সেইজন্যই তিনি এইসব অলৌকিক কাজ করছেন৷’ 15 কিন্তু কেউ কেউ বলল, ‘তিনি এলীয়৷’আবার কেউ কেউ বলল, ‘তিনি প্রাচীনকালের কোন ভাববাদীর মতোই একালের একজন ভাববাদী৷’ 16 কিন্তু হেরোদ তাঁর কথা শুনে বললেন, ‘উনি সেই য়োহন, য়াঁর মাথা কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিনিই আবার বেঁচে উঠেছেন৷’ 17 হেরোদ নিজের ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিযাকে বিয়ে করেছিলেন, সেই জন্য নিজের লোক পাঠিয়ে য়োহনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রেখেছিলেন৷ 18 কারণ য়োহন হেরোদকে বলেছিলেন, ‘ভাইয়ের স্ত্রীকে নিজের কাছে রাখা ঠিক নয়৷’ 19 হেরোদিযা রাগে য়োহনকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু পারে নি৷ 20 কারণ হেরোদ য়োহনকে ধার্মিক এবং পবিত্র লোক জেনে ভয় করতেন, সেইজন্যে তিনি তাঁকে রক্ষা করতেন৷ তাঁর কথা শুনে তিনি অত্যন্ত বিচলিত হতেন তবুও তাঁর কথা শুনতে ভালবাসতেন৷ 21 শেষ পর্যন্ত হেরোদিযা যা চেয়েছিলেন সেই সুয়োগ এসে গেল৷ হেরোদ তাঁর জন্মদিনে প্রাসাদের উচ্চপদস্থ কর্মচারী, সেনাবাহিনীর অধ্যক্ষ ও গালীলের গন্যমান্য নাগরিকদের জন্য নৈশভোজের আযোজন করলেন; 22 আর হেরোদিযার মেয়ে এসে রাজা ও নিমন্ত্রিত অতিথিদের নাচ দেখিয়ে মুগ্ধ করল৷ রাজা সেই মেয়েকে বললেন, ‘আমাকে বল তুমি কি চাও? তুমি যা চাইবে তা-ই দেব৷’ 23 তিনি শপথ করে আরো বললেন, ‘আমার কাছে যা চাইবে আমি তাই দেব, এমনকি অর্ধেক রাজ্যও দেব৷’ 24 তাতে সে বেরিয়ে গিয়ে তার মাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘আমি কি চাইব?’ সে বলল, ‘বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের মাথা৷’ 25 মেয়েটি তাড়াতাড়ি রাজার কাছে ফিরে গেল এবং বলল, ‘আমার ইচ্ছা য়ে, আপনি বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের মাথাটি এনে এখনই থালায় করে আমাকে দিন৷’ 26 তাতে রাজা হেরোদ দুঃখ পেলেন: কিন্তু নিজের শপথের জন্য এবং ভোজসভার অতিথিদের জন্য তিনি মেয়েকে ফেরাতে চাইলেন না৷ 27 তাই রাজা সঙ্গে সঙ্গে একজন সেনাকে য়োহনের মাথা কেটে নিয়ে আসতে পাঠালেন৷ সে কারাগারে গিয়ে তাঁর শিরশ্ছেদ করল, 28 এবং থালায় করে মাথাটি নিয়ে মেয়েটিকে দিল, মেয়েটি তা তার মাকে দিল৷ 29 এই সংবাদ শুনে য়োহনের শিষ্যরা এসে, তাঁর দেহটিকে নিয়ে গিয়ে কবর দিলেন৷ 30 এরপর য়ে প্রেরিতদের যীশু প্রচার করতে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা যীশুর কাছে ফিরে এসে যা কিছু করেছিলেন ও যা কিছু শিক্ষা দিয়েছিলেন সে সব কথা তাঁকে জানালেন৷ 31 তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা কোন নির্জন স্থানে গিয়ে একটু বিশ্রাম কর৷’ কারণ এত লোক যাতাযাত করছিল য়ে তাঁদের খাবার সময় হচ্ছিল না৷ 32 তাই তাঁরা নৌকা করে কোন নির্জন স্থানে চললেন৷ 33 কিন্তু লোকরা তাঁদের য়েতে দেখল এবং অনেকে তাঁদের চিনতে পারল, তাই সমস্ত শহর থেকে লোকেরা বের হয়ে কিনারা ধরে দৌড়ে তাঁদের আগে সেখানে পৌঁছল৷ 34 যীশু নৌকা থেকে বাইরে বেরিয়ে বহু লোককে দেখতে পেলেন, তাঁর প্রাণে তাদের জন্য খুবই দযা হল; কারণ তাদের পালকহীন মেষপালের মতো দেখাচ্ছিল৷ তখন তিনি তাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ 35 সেই দিন বেলা প্রায় শেষ হয়ে এলে যীশুর শিষ্যরা এসে তাঁকে বললেন, ‘এটা নির্জন স্থান এবং সন্ধ্যাও ঘনিয়ে এল৷ 36 এদের বিদায় করুন; যাতে এরা আশপাশের গ্রামে গিয়ে খাবার কিনতে পারে৷’ 37 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরাই ওদের খেতে দাও৷’ তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘এতো লোককে রুটি কিনে খাওযাতে গেলে তো দুশো দীনার লাগবে৷’ 38 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে কখানা রুটি আছে খুঁজে দেখ৷’ 39 তাঁরা দেখে বললেন, ‘আমাদের কাছে পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ আছে৷’ তখন তিনি প্রত্যেককে সবুজ ঘাসের উপর বসিয়ে দিতে বললেন৷ 40 তাঁরা শ’ শ’ জন এবং পঞ্চাশ পঞ্চাশ জন করে সারি সারি বসে পড়ল৷ 41 তখন তিনি সেই পাঁচটা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে রুটিগুলোকে টুকরো টুকরো করে শিষ্যদের হাতে দিয়ে লোকদের দিতে বললেন৷ আর সেই দুটো মাছকেও টুকরো টুকরো করে সকলকে ভাগ করে দিলেন৷ 42 তারা সকলে তৃপ্তির সঙ্গে খেল৷ 43 আর যা পড়ে রইল সেই সমস্ত টুকরো রুটি ও মাছে বারোটি টুকরি ভর্তি হয়ে গেল৷ 44 যত পুরুষ সেদিন খেয়েছিল, তারা সংখ্যায় পাঁচ হাজার ছিল৷ 45 পরে তিনি তাঁর শিষ্যদের নৌকায় উঠে তাঁর আগে ওপারে বৈত্সৈদাতে পৌঁছাতে বললেন, সেইসময় তিনি লোকেদের বিদায় দিচ্ছিলেন৷ 46 লোকেদের বিদায় করে তিনি প্রার্থনা করবার জন্য পাহাড়ে চলে গেলেন৷ 47 সন্ধ্যাকালে নৌকাটিহ্রদের মাঝখানে ছিল এবং তিনি একা ডাঙ্গায় ছিলেন৷ 48 তিনি দেখলেন য়ে শিষ্যরা বাতাসের বিরুদ্ধে খুব কষ্টের সঙ্গে দাঁড় টেনে চলেছেন৷ খুব ভোর বেলা প্রায় তিনটে ও ছটার মধ্যে তিনি হ্রদের জলের উপর দিয়ে হেঁটে তাদের কাছে এলেন৷ তিনি তাঁদের পাশ কাটিয়ে এগিয়ে য়েতে চাইলেন৷ 49 কিন্তু হ্রদের উপর দিয়ে তাঁকে হাঁটতে দেখে তাঁরা ভাবলেন ভূত, আর এই ভেবে তাঁরা চেঁচিয়ে উঠলেন৷ 50 কারণ তাঁরা সকলেই তাঁকে দেখে ভয় পেয়েছিলেন; কিন্তু যীশু সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বললেন, ‘সাহস করো ! ভয় করো না, এতো আমি!’ 51 পরে তিনি তাদের নৌকায় উঠলে ঝড় থেমে গেল৷ তাতে তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 52 কারণ এর আগে তাঁরা পাঁচটা রুটির ঘটনার অর্থ বুঝতে পারেন নি, তাঁদের মন কঠোর হয়ে পড়েছিল৷ 53 পরে তাঁরা ্ব্রদ পার হয়ে গিনেষরত্ প্রদেশে এসে নৌকা বাঁধলেন৷ 54 তিনি নৌকা থেকে নামলে লোকরা তাঁকে চিনে ফেলল৷ 55 তারা ঐ এলাকার সমস্ত অঞ্চলে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি করে অসুস্থ লোকদের খাটিযা করে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে লাগল৷ 56 গ্রামে, শহরে বা পাড়ায় য়েখানে তিনি য়েতেন, সেখানে লোকেরা অসুস্থ রোগীদের এনে বাজারের মধ্যে জড়ো করত৷ তারা মিনতি করত য়েন শুধু যীশুর কাপড়ের ঝালর স্পর্শ করতে পারে৷ আর যাঁরা তাঁর কাপড় স্পর্শ করত তারা সকলেই সুস্থ হয়ে য়েত৷
1 কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক জেরুশালেম থেকে যীশুর কাছে এলেন৷ 2 তাঁরা দেখলেন য়ে, তাঁর কয়েকজন শিষ্য হাত না ধুয়ে খাবার খাচ্ছেন৷ 3 ফরীশী সম্প্রদায়ের লোকেরা এবং সমস্ত ইহুদীরা প্রাচীন রীতি অনুসারে ভাল করে হাত না ধুয়ে খাবার খেতো না৷ 4 আর বাজার থেকে কোন কিছু কিনলে তা বিশেষভাবে না ধুয়ে খেতো না৷ আরও বহু প্রাচীন রীতি নীতি তারা মেনে চলত, য়েমন পানপাত্রটি, কলসী ও পিতলের নানা পাত্র ধোওযা ইত্যাদি৷ 5 সেই ফরীশীরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনার শিষ্যরা প্রাচীন রীতিনীতি অনুসারে চলে না, তারা হাত না ধুয়ে তাদের খাবার খায়, এর কারণ কি?’ 6 যীশু তাঁদের বললেন, ‘ভণ্ডরা, ভাববাদী যিশাইয় তোমাদের বিষয়ে ঠিকই বলেছেন, য়েমন লেখা আছে, ‘এই লোকেরা মুখেই শুধু আমাকে সম্মান করে, কিন্তু তাদের মন আমার থেকে অনেক দূরে থাকে৷ 7 এরা অনর্থক আমার উপাসনা করে৷ কারণ এরা মানুষের তৈরী রীতি-নীতি ঈশ্বরের আদেশ বলে লোকদের শিক্ষা দেয়৷’যিশাইয় 29:13 8 তোমরা ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করে মানুষের প্রচলিত প্রথা পালন করে থাকো৷’ 9 যীশু তাদের আরো বললেন, ‘তোমরা নিজেদের ঐতিহ্য় বজায় রাখার জন্য খুব বুদ্ধি খাটিয়ে ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করছ৷ 10 মোশি বলেছেন, ‘তুমি নিজের বাবা, মাকে সম্মান করো,’আর ‘য়ে লোকটি বাবা কিংবা মায়ের নিন্দা করবে তার মৃত্যুদণ্ড হবে৷’ 11 কিন্তু তোমরা বল লোকটি যদি তার বাবা-মাকে বলে, ‘আমি যা কিছু দিয়ে তোমাদের উপকার করতে পারতাম, তা ঈশ্বরকে উত্সর্গ করেছি,’ 12 তখন এমন লোককে তোমরা বাবা বা মায়ের জন্য কিছুই করতে দাও না৷ 13 ঈশ্বরের বাক্য তোমাদের বংশানুক্রমে পালন করা ঐতিহ্য দ্বারা তোমরা নিষ্ফল কর৷ 14 তিনি সমস্ত লোককে আবার তাঁর কাছে ডেকে বললেন, ‘তোমরা সকলে আমার কথা শোন এবং বোঝ৷ 15 মানুষের বাইরে এমন কিছু নেই যা ভেতরে গিয়ে তাকে কলুষিত করতে পারে কিন্তু যা যা মানুষের ভেতর থেকে বের হয় সেটাই মানুষকে কলুষিত করে৷’ 16 17 পরে তিনি লোকদের ছেড়ে বাড়িতে ঢুকলে, তাঁর শিষ্যরা তাঁকে সেই দৃষ্টান্তটির অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন৷ 18 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরাও কি অবোধ? তোমরা কি বোঝ না, বাইরে থেকে যা কিছু মানুষের ভেতরে যায় তা তাকে কলুষিত করতে পারে না? 19 কারণ এটা তার অন্তরে য়েতে পারে না, পাকস্থলীতে যায় এবং তারপর দেহের বাইরে গিয়ে পড়ে৷’ এই কথার মাধ্যমে তিনি সমস্ত খাবারকেই শুদ্ধ বললেন৷ 20 তিনি আরও বললেন, ‘মানুষের অন্তর থেকে যা বার হয়, সেটাই মানুষকে কলুষিত করে৷ 21 কারণ মানুষের ভেতর অর্থাত্ মন থেকে বার হয় কুত্সিত চিন্তা, লালসা, চুরি, খুন, 22 য়ৌন পাপ, লোভ, দুষ্টামি, প্রতারণা, অশ্লীলতা, ঈর্ষা, নিন্দা, অভিমান ও অহঙ্কার৷ 23 এই সমস্ত খারাপ বিষয় মানুষের ভেতর থেকে বার হয় ও মানুষকে কলুষিত করে৷’ 24 পরে তিনি সেই স্থান ছেড়ে সোর অঞ্চলে গিয়ে সেখানে একটা বাড়িতে ঢুকলেন, আর তিনি য়ে সেখানে এসেছেন সেটা গোপন রাখতে চাইলেন: কিন্তু পারলেন না৷ 25 যীশুর আসার কথা শুনে একটি স্ত্রীলোক, যার মেয়ের ওপর অশুচি আত্মা ভর করেছিল, সে সঙ্গে সঙ্গে এসে যীশুর পায়ে লুটিয়ে পড়ল৷ 26 স্ত্রীলোকটি ছিল জাতিতে গ্রীক, সুরফৈনীকী৷ সে মিনতি করে যীশুকে বলল য়েন তিনি তার মেয়ের ভেতর থেকে ভূতকে তাড়িয়ে দেন৷ 27 তিনি স্ত্রীলোকটিকে বললেন, ‘প্রথমে ছেলেমেয়েরা তৃপ্ত হোক, কারণ ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরকে খাওযানো ঠিক নয়৷’ 28 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বলল, ‘প্রভু এটা সত্য; কিন্তু কুকুররাও তো খাবার টেবিলের নীচে ছেলেমেয়েদের ফেলে দেওযা খাবারের টুকরোগুলো খেতে পায়৷’ 29 তখন তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি ভালোই বলেছ, বাড়ি যাও, গিয়ে দেখ ভূত তোমার মেয়েকে ছেড়ে চলে গেছে৷ 30 তখন সে বাড়ি গিয়ে দেখতে পেল, মেয়েটি বিছানায় শুয়ে আছে এবং ভূত তার মধ্য থেকে বেরিয়ে গেছে৷ 31 পরে তিনি সোর থেকে সীদোন হয়ে দিকাপলি অঞ্চলের ভেতর দিয়ে গালীলহ্রদের কাছে ফিরে এলেন৷ 32 তখন কিছু লোক একটা বোবা কালাকে তাঁর কাছে এনে তাঁকে তার ওপর হাত রাখতে মিনতি করল৷ 33 তিনি তাঁকে ভীড়ের মধ্যে থেকে এক পাশে এনে তার দুই কানে নিজের আঙ্গুল দিলেন৷ তারপর থুথু ফেলে তার জিভ ছুঁলেন৷ 34 আর স্বর্গের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, ‘ইপফাথা!’ যার অর্থ ‘খুলে যাক!’ 35 সঙ্গে সঙ্গে লোকটি কানে শুনতে পেল, তার জিভের জড়তা কেটে গেল আর সে ভালভাবেই কথা বলতে লাগল৷ 36 পরে তিনি তাদের একথা আর কাউকে বলতে নিষেধ করলেন; কিন্তু তিনি যতই বারণ করলেন ততই তারা আরো বেশী করে বলতে লাগল৷ 37 যীশুর এই কাজ দেখে তারা অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে গিয়ে বলল, ‘তিনি যা কিছু করেন তা অপূর্ব৷ তিনি কালাকে শোনার শক্তি, বোবাকে কথা বলার শক্তি দেন৷’
1 সেই দিনগুলিতে আবার একবার অনেক লোকের ভীড় হল৷ তাদের কাছে খাবার ছিল না, তাই তিনি তাঁর শিষ্যদের ডেকে বললেন, 2 ‘এই লোকদের জন্য আমার মমতা হচ্ছে, কারণ এরা আজ তিনদিন ধরে আমার কাছে রয়েছে, এদের কাছে কিছু খাবার নেই৷ 3 যদি আমি এদের ক্ষুধার্ত ও অভুক্ত অবস্থায় বাড়ি পাঠাই, তবে এরা রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়বে৷ এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার বহু দূর থেকে এসেছে৷’ 4 তাঁর শিষ্যেরা এর উত্তরে বললেন, ‘এই জনমানবহীন জায়গায় আমরা কোথা থেকে এতগুলো লোকের খাবার জোগাড় করব?’ 5 তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমাদের কখানা রুটি আছে?’ তারা বলল, ‘সাতখানা৷’ 6 তখন তিনি লোকেদের মাটিতে বসতে আদেশ দিলেন৷ পরে সেই সাতটা রুটি তুলে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে রুটি গুলোকে টুকরো টুকরো করে পরিবেশনের জন্য শিষ্যদের হাতে তুলে দিলেন৷ তাঁরাও লোকদের মধ্যে পরিবেশন করলেন৷ 7 তাদের কাছে কতগুলো ছোট মাছ ছিল; তিনি সেগুলোর জন্যও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে শিষ্যদের বললেন, ‘এগুলো পরিবেশন করে দাও৷’ 8 লোকরা খেয়ে তৃপ্তি পেল৷ অবশিষ্ট টুকরো দিয়ে তারা সাতটি ঝুড়ি ভর্তি করল৷ 9 সেদিন প্রায় চার হাজার লোক খেয়েছিল৷ এরপর তিনি তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন; 10 আর সঙ্গে সঙ্গে তিনি শিষ্যদের নিয়ে নৌকা করে দল্মনুথা অঞ্চলে চলে এলেন৷ 11 পরে সেখানে ফরীশীরা এসে যীশুর সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিল৷ তাঁর কাছে আকাশ থেকে কোন অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চাইল৷ তাদের উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে পরীক্ষা করা৷ 12 তখন তিনি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, ‘এই যুগের লোকরা কেন অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চায়? আমি তোমাদের সত্যি বলছি কোন অলৌকিক চিহ্ন এই লোকদের দেখানো হবে না৷’ 13 তখন তিনি তাদের ছেড়ে নৌকা করেহ্রদের অপর পারে গেলেন৷ 14 কিন্তু শিষ্যেরা রুটি আনতে ভুলে গিয়েছিলেন: নৌকায় তাদের কাছে কেবল একখানা রুটি ছাড়া আর কোন রুটি ছিল না৷ 15 তখন তিনি তাদের সতর্ক করে দিয়ে বললেন, ‘সাবধান! তোমরা হেরোদ এবং ফরীশীদের খামিরের বিষয়ে সাবধান থেকো!’ 16 তখন তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেন, ‘আমাদের কাছে কোন রুটি নেই৷’ 17 তাঁরা যা বলছেন, তা বুঝতে পেরে যীশু বললেন, ‘তোমাদের রুটি নেই বলে কেন আলোচনা করছ? তোমরা এখনও কি দেখ না বা বোঝ না, তোমাদের মন কি এতই কঠিন? 18 চোখ থাকতে কি তোমরা দেখতে পাও না? কান থাকতে কি শুনতে পাও না? আর তোমাদের কি মনেও পড়ে না? 19 যখন আমি পাঁচ হাজার লোকের মধ্যে পাঁচটি রুটি টুকরো করে দিয়েছিলাম: তখন তোমরা কত টুকরি উদ্বৃত্ত রুটির টুকরো কুড়িয়ে নিয়েছিলে?’ তাঁরা বললেন, ‘বারো টুকরি৷’ 20 যীশু আবার বললেন, ‘আমি যখন সাতটা রুটি চার হাজার লোকের মধ্যে টুকরো করে দিয়েছিলাম তখন কত টুকরি উদ্বৃত্ত রুটির টুকরো তোমরা তুলে নিয়েছিলে?’ তাঁরা বললেন, ‘সাত টুকরি৷’ 21 তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা কি এখনও বুঝতে পারছ না?’ 22 তারপর তাঁরা বৈত্সৈদায় এলেন: আর লোকরা তাঁর কাছে একটা অন্ধ লোককে নিয়ে এসে মিনতি করল যাতে তিনি তাকে স্পর্শ করেন৷ 23 তখন তিনি অন্ধ লোকটির হাত ধরে তাকে গ্রামের বাইরে নিয়ে গেলেন৷ তিনি লোকটির চোখে খানিকটা থুথু লাগিয়ে তার ওপরে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি কিছু দেখতে পাচ্ছ?’ 24 সে চোখ তুলে চেয়ে বলল, ‘আমি মানুষ দেখতে পাচ্ছি; গাছের মত দেখতে, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে৷’ 25 তখন তিনি আবার তার চোখের ওপর হাত রাখলেন৷ এইবার লোকটি চোখ বড় বড় করে তাকাল৷ তার দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে ফিরে পেল এবং সবকিছু স্পষ্টভাবে দেখতে পেল৷ 26 তারপর তিনি তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, ‘এই গ্রামে য়েও না৷’ 27 তারপর যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা সেখান থেকে কৈসরিযা ফিলিপীয় অঞ্চলে চলে গেলেন৷ রাস্তার মধ্যে তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আমি কে, এ বিষয়ে লোকের কি বলে?’ 28 তাঁরা বললেন, ‘অনেকে বলে আপনি, ‘বাপ্তিস্মদাতা য়োহন৷ কেউ কেউ বলে, আপনি এলীয়৷ আবার কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে একজন৷’ 29 তখন তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?’ পিতর তাঁকে বললেন, ‘আপনি সেই খ্রীষ্ট৷’ 30 তখন তিনি তাঁদের সাবধান করে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা এ কথা কাউকে বলো না৷’ 31 এরপর তিনি তাঁদের এই শিক্ষা দিতে শুরু করলেন য়ে, মানবপুত্রকে অনেক দুঃখ ভোগ করতে হবে এবং বয়স্ক ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, হত্যা করবে এবং মৃত্যুর তিনদিন পর তিনি আবার বেঁচে উঠবেন৷ 32 এই কথা তিনি তাঁদের স্পষ্টভাবে বললেন, তাতে পিতর তাঁকে একপাশে নিয়ে গিয়ে অনুয়োগ করতে লাগলেন৷ 33 কিন্তু যীশু তাঁর শিষ্যদের দিকে মুখ ফিরিয়ে পিতরকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘আমার সামনে থেকে দূর হও, শয়তান! কারণ তুমি ঈশ্বরের ইচ্ছার সমাদর করছ না; তুমি মানুষের মতোই ভেবে এই কথা বলছ৷’ 34 এরপর তিনি শিষ্যদেব সঙ্গে অন্যান্য লোকদেরও নিজের কাছে ডেকে বললেন, ‘কেউ যদি আমার সঙ্গে আসতে চায়., সে নিজেকে অস্বীকার করুক এবং তার নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক৷ 35 কারণ কেউ যদি নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চায় তবে সে তা হারাবে; কিন্তু কেউ যদি আমার এবং সুসমাচারের জন্য নিজের প্রাণ হারায় তবে তার জীবন চিরস্থায়ী হবে৷ 36 মানুষ যদি নিজের জীবন হারিয়ে সমস্ত জগত্ লাভ করে তবে তার কি লাভ? 37 কিংবা মানুষ তার প্রাণের বিনিময়ে কি দিতে পারে? 38 য়ে কেউ এই ব্যভিচারী ও পাপীদের যুগে আমাকে এবং আমার শিক্ষাকে লজ্জার বিষয় মনে করে, মানবপুত্র যখন তাঁর পিতার মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে পবিত্র স্বর্গদূতদের সঙ্গে ফিরে আসবেন, তখন তিনিও সেই লোকের বিষয়ে লজ্জাবোধ করবেন৷
1 তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি যাঁরা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তদের মধ্যে কয়েকজন আছে, যাঁরা কোনমতেই মৃত্যু দেখবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত ঈশ্বরের রাজ্য মহাপরাক্রমের সঙ্গে আসতে না দেখে৷’ 2 ছদিন বাদে যীশু পিতর, যাকোব এবং য়োহনকে সঙ্গে করে এক উঁচু পাহাড়ে উঠে গেলেন৷ তাঁদের সামনে তাঁর রূপ পরিবর্তিত হয়ে গেল৷ 3 তাঁর পোশাক এত উজ্জ্বল ও শুভ্র হল য়ে পৃথিবীর কোন রজক সেই রকম সাদা করতে পারে না৷ 4 তখন মোশি এবং এলীয় তাঁদের সামনে এসে যীশুর সাথে কথা বলতে শুরু করলেন৷ 5 তখন পিতর যীশুকে বললেন, ‘গুরুদেব, এখানে আমাদের থাকা ভাল৷ আমরা তিনটি তাঁবু তৈরী করি৷ একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য এবং একটা এলীয়র জন্য৷’ 6 কারণ কি বলতে হবে তা তিনি জানতেন না, তাঁরা অত্যন্ত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন৷ 7 পরে একখানা মেঘ এসে তাঁদের ছাযা দিয়ে ঢেকে ফেলল; আর সেই মেঘ থেকে এই রব শোনা গেল, ‘ইনি আমার প্রিয় পুত্র৷ তোমরা তাঁর কথা শোন৷’ 8 শিষ্যেরা তখনই চারদিকে তাকালেন; কিন্তু যীশু ছাড়া আর কাউকে সেখানে দেখতে পেলেন না৷ 9 পাহাড় থেকে নামার সময় তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘তোমরা যা যা দেখলে তা কাউকে বলো না যতক্ষণ না মৃত্যু থেকে মানবপুত্র বেঁচে উঠছেন৷’ 10 তারা সেই ঘটনার কথা নিজেদের মধ্যেই চেপে রাখলেন; কিন্তু ভাবতে লাগলেন, মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠা কথাটির অর্থ কি হতে পারে৷ 11 পরে শিষ্যরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কেন ব্যবস্থার শিক্ষকরা বলেন য়ে প্রথমে এলীয়কে আসতে হবে?’ 12 তিনি তাদের বললেন, ‘হ্যাঁ, এলীয় প্রথমে এসে সব কিছু পুনঃস্থাপন করবেন বটে, কিন্তু মানবপুত্রের বিষয়ে কেন এসব লেখা হয়েছে য়ে তাঁকে অনেক দুঃখ পেতে হবে আর লোকে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে? 13 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলীয়ের বিষয়ে য়েমন লেখা আছে, সেই অনুসারে তিনি এসে গেছেন এবং লোকরা তাঁর প্রতি যা ইচ্ছে তাই করেছে৷’ 14 পরে তাঁরা অন্য শিষ্যদের কাছে এসে দেখলেন তাঁদের চারদিকে অনেক লোক আর ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাদের সাথে তর্ক করছেন৷ 15 তাঁকে দেখামাত্র সমস্ত লোক অবাক হল এবং তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে প্রণাম জানাতে লাগল৷ 16 তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা এদের সঙ্গে কি নিয়ে তর্ক করছ?’ 17 তাতে লোকেদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠল, ‘হে গুরু, আমার ছেলেটিকে আপনার কাছে এনেছিলাম৷ তাকে এক বোবা আত্মায় পেয়েছে, সে কথা বলতে পারে না৷ 18 সেই আত্মা তাকে য়েখানে ধরে, সেইখানে আছাড় মারে; আর তার মুখে ফেনা ওঠে, সে দাঁত কিড়মিড় করে আর শক্ত হয়ে যায়৷ আমি আপনার শিষ্যদের এই আত্মাটাকে ছাড়াতে বললাম, কিন্তু তাঁরা পারলেন না৷’ 19 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘হে অবিশ্বাসী বংশ, আমাকে আর কতকাল তোমাদের সঙ্গে থাকতে হবে? তোমাদের নিয়ে আর আমি কত ধৈর্য্য ধরব? তাকে আমার কাছে নিয়ে এস৷’ 20 তারা তাকে তাঁর কাছে নিয়ে এল৷ যীশুকে দেখামাত্র সেই আত্মা ছেলেটিকে মুচড়ে ধরল; আর সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগল, তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল৷ 21 তখন যীশু তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এর কতদিন এমন হয়েছে?’ছেলেটির বাবা বলল, ‘ছেলেবেলা থেকে এরকম হয়েছে৷ 22 এই আত্মা একে মেরে ফেলার জন্য অনেকবার আগুনে ও জলে ফেলে দিয়েছে৷ আপনি যদি কিছু করতে পারেন, তবে দযা করে আমাদের উপকার করুন৷’ 23 যীশু তাকে বললেন, ‘কি বললে, ‘যদি পারেন! য়ে বিশ্বাস করে তার পক্ষে সবই সন্ভব৷’ 24 সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটির বাবা চিত্কার করে কেঁদে বলল, ‘আমি বিশ্বাস করি! আমার অবিশ্বাসের প্রতিকার করুন!’ 25 অনেক লোক সেদিকে আসছে দেখে যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমকে বললেন, ‘হে বোবা কালার আত্মা, আমি তোমাকে বলছি, এর মধ্যে আর কখনও ঢুকবে না!’ 26 তখন সেই আত্মা চেঁচিয়ে তাকে ভয়ঙ্করভাবে মুচড়ে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল৷ তাতে ছেলেটি মড়ার মত হয়ে পড়ল, এমন কি অধিকাংশ লোক বলল, ‘সে মরে গেছে৷’ 27 কিন্তু যীশু তার হাত ধরে তুললে সে উঠে দাঁড়াল৷ 28 পরে যীশু বাড়ি ফিরে এলে শিষ্যরা তাঁকে একান্তে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমরা কেন ঐ অশুচি আত্মাকে তাড়াতে পারলাম না?’ 29 যীশু তাঁদের বললেন, ‘প্রার্থনা ছাড়া আর কোন কিছুতেই এ আত্মাকে তাড়ানো যায় না৷’ 30 পরে সেই স্থান ছেড়ে তাঁরা গালীলের মধ্য দিয়ে চললেন; আর তিনি চাইলেন না য়ে তাঁরা কোথায় আছে সেকথা অন্য কেউ জানুক৷ 31 কারণ তখন তিনি তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন৷ তিনি তাঁদের বললেন, ‘মানবপুত্রকে লোকদের হাতে তুলে দেওযা হবে, এবং তারা তাঁকে হত্যা করবে আর মৃত্যুর তিনদিন পরে তিনি বেঁচে উঠবেন৷’ 32 কিন্তু তাঁরা সেই কথা বুঝলেন না এবং এই বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেও ভয় পেলেন৷ 33 এরপর তাঁরা কফরনাহূমে ফিরে এলেন আর বাড়ির ভেতরে গিয়ে তিনি শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা রাস্তায় কি আলোচনা করছিলে?’ 34 কিন্তু তাঁরা চুপচাপ থাকলেন কারণ তাঁদের মধ্যে কে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এই নিয়ে তর্ক চলছিল৷ 35 তখন যীশু বসে সেই বারোজন প্রেরিতদের ডেকে বললেন, ‘কেউ যদি প্রথম হতে চায়, তবে সে সকলের শেষে থাকবে এবং সকলের পরিচারক হবে৷’ 36 পরে যীশু একটা শিশুকে নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তাকে কোলে করে তাঁদের বললেন, 37 ‘য়ে কেউ আমার নামে এর মতো কোন শিশুকে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে৷ আর কেউ যদি আমাকে গ্রহণ করে, সে আমাকে নয়, কিন্তু যিনি (ঈশ্বর) আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেই গ্রহণ করে৷’ 38 য়োহন তাঁকে বললেন, ‘গুরু, আমরা একটি লোককে আপনার নামে ভুত তাড়াতে দেখে তাকে বারণ করেছিলাম, কারণ সে আমাদের লোক নয়৷’ 39 কিন্তু যীশু বললেন, ‘তাকে বারণ করো না, কারণ এমন কেউ নেই য়ে আমার নামে অলৌকিক কাজ করে সহজে আমার নিন্দা করতে পরে৷ 40 য়ে কেউই আমাদের বিপক্ষে নয় সে আমাদের সপক্ষে৷ 41 কেউ যদি খ্রীষ্টের লোক বলে তোমাদেরকে এক ঘটি জল দেয়, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সে কোন মতেই নিজের পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হবে না৷ 42 ‘আর এই য়ে সাধারণ লোক যাঁরা আমায় বিশ্বাস করে, যদি কেউ তাদের একজনকে পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে সেই লোকের গলায় একটা বড় যাতাঁর পাট বেঁধে তাকে সমুদ্রে ফেলে দেওযাই তার পক্ষে ভাল৷ 43 তোমার হাত যদি তোমার পাপের কারণ হয়, তবে তাকে কেটে ফেল, কারণ দুই হাত নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে পোড়ার থেকে বরং নুলো হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল৷ 44 45 তোমার পা যদি তোমার পাপের কারণ হয় তবে তাকে কেটে ফেল, কারণ দুই পা নিয়ে নরকে যাওযার থেকে বরং খোঁড়া হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল৷ 46 47 আর যদি তোমার চোখ তোমার পাপের কারণ হয়, তবে সে চোখকে উপড়ে ফেল৷ দুচোখ নিয়ে নরকে যাওযার থেকে এক চোখ নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভাল৷ 48 নরকে য়ে কীট মানুষকে খায় তারা কখনও মরে না এবং আগুন কখনও নেভে না৷ 49 লবণ দেওযার মত প্রত্যেকের ওপর আগুন দেওযা হবে৷ 50 ‘লবণ ভাল, কিন্তু লবণ যদি লবণত্ব হারায়, তবে কেমন করে তাকে তোমরা আস্বাদযুক্ত করবে? তোমরা নিজের নিজের মনে লবণ রাখ এবং পরস্পর শান্তিতে থাক৷’
1 এরপর যীশু সেই স্থান ছেড়ে যর্দন নদীর অন্য পাড়ে যিহূদিযার অঞ্চলে এলেন৷ আবার লোকরা তাঁর কাছে এল এবং তিনি তাঁর রীতি অনুসারে তাঁদের শিক্ষা দিলেন৷ 2 তখন কয়েকজন ফরীশী তাঁর কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘একটি লোকের পক্ষে তার স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি আইনত ঠিক?’ তাঁরা তাঁকে পরীক্ষা করার জন্যই এই কথা জিজ্ঞাসা করলেন৷ 3 যীশু তাদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন ‘এই ব্যাপারে মোশি তোমাদের কি নির্দেশ দিয়েছেন?’ 4 তারা বললেন, ‘বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র লিখে নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করবার অনুমতি মোশি দিয়েছেন৷’ 5 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের কঠিন মনের জন্য তিনি আজ্ঞা লিখেছিলেন৷ 6 কিন্তু সৃষ্টির প্রথম থেকেই ‘ঈশ্বর স্ত্রী পুরুষ হিসাবে তাদের তৈরী করেছেন৷’ 7 ‘সেইজন্যই মানুষ তার বাবা-মাকে ত্যাগ করে স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হয়, 8 আর ঐ দুজন একদেহে পরিণত হয়৷’তখন তারা আর দুজন নয়, তারা এক৷ 9 অতএব ঈশ্বর যাদের য়োগ করে দিয়েছেন, মানুষ তাদের বিচ্ছিন্ন না করুক৷’ 10 তারা বাড়িতে এলে শিষ্যেরা তাঁকে সেই বিষয় জিজ্ঞাসা করলেন৷ 11 যীশু তাদের বললেন, ‘কেউ যদি নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করে অন্য কাউকে বিয়ে করে তবে সে তার বিরুদ্ধে ব্যভিচার করে৷ 12 যদি সেই স্ত্রীলোকটি নিজের স্বামীকে ত্যাগ করে আর একজনকে বিয়ে করে সেও ব্যভিচার করে৷’ 13 পরে লোকরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের তাঁর কাছে নিয়ে এল, য়েন তিনি তাদের স্পর্শ করেন: কিন্তু শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন৷ 14 যীশু তা দেখে ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাদের বললেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আমার কাছে আসতে দাও৷ তাদের বারণ করো না, কারণ এদের মত লোকদের জন্যই তো ঈশ্বরের রাজ্য৷ 15 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি ছোট ছেলেমেয়েদের মন নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্য গ্রহণ না করে, তবে সে কোনমতেই সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না৷’ 16 এরপর তিনি তাদের কোলে নিলেন এবং তাদের ওপর হাত রেখে আশীর্বাদ করলেন৷ 17 পরে তিনি বেরিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, এমন সময় একজন লোক দৌড়ে এসে, তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে সত্ গুরু, অনন্ত জীবন লাভের জন্য আমি কি করব?’ 18 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি কেন আমাকে সত্ বলছ? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউই সত্ নয়৷ 19 তুমি তো ঈশ্বরের সব আদেশ জানো, ‘নরহত্যা কোরো না, ব্যভিচার কোরো না, চুরি কোরো না, বাবা-মাকে সম্মান কোরো৷” 20 লোকটি তাঁকে বলল, ‘হে গুরু, ছোটবেলা থেকে এগুলো আমি পালন করে আসছি৷’ 21 যীশু লোকটির দিকে সস্নেহে তাকালেন এবং বললেন, ‘একটা বিষয়ে তোমার ত্রুটি আছে৷ যাও তোমার যা কিছু আছে বিক্রি কর; আর সেই অর্থ গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাতে তুমি স্বর্গে ধন পাবে৷ তারপর এসে আমাকে অনুসরণ কর৷’ 22 এই কথায় সে মর্মাহত ও দুঃখিত হল এবং ম্লান মুখে চলে গেল, কারণ তার অনেক সম্পত্তি ছিল৷ 23 তখন যীশু চারদিকে তাকিয়ে শিষ্যদের বললেন, ‘যাদের ধন আছে তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা খুবই দুষ্কর!’ 24 শিষ্যেরা তাঁর কথা শুনে অবাক হলেন৷ যীশু আবার তাঁদের বললেন, ‘শোন, ঈশ্বরের রাজ্যে যাওযা সত্যিই কষ্টকর৷ 25 একজন ধনী লোকের ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং সূচের ছিদ্র দিয়ে উটের যাওযা সহজ৷’ 26 তখন তারা আরও আশ্চর্য হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, ‘তবে কারা উদ্ধার পেতে পারে?’ 27 তখন যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এটা মানুষের পক্ষে অসন্ভব; কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে নয়, কারণ সমস্ত কিছুই ঈশ্বরের পক্ষে সন্ভব৷’ 28 তখন পিতর তাঁকে বলতে লাগলেন, ‘দেখুন! আমরা সবকিছু ত্যাগ করে আপনার অনুসারী হয়েছি৷’ 29 যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছিয়ে কেউ আমার জন্য বা আমার সুসমাচার প্রচারের জন্য বাড়িঘর, ভাইবোন, মা-বাবা, ছেলেমেয়ে জমিজমা ছেড়ে এসেছে, 30 তার বদলে সে এই জগতে তার শতগুণ ফিরে পাবে৷ তাকে তাড়না ভোগ করতে হলেও এই জগতে শতগুণ বাড়িঘর, ভাইবোন, মা, ছেলেমেয়ে এবং জমিজমা পাবে, আর পরবর্তী যুগে পাবে অনন্ত জীবন৷ 31 কিন্তু আজ যাঁরা প্রথম, এমন অনেক লোক শেষে পড়বে এবং যাঁরা আজ শেষের তাদের মধ্যে অনেকেপ্রথম হবে৷ 32 একদিন তাঁরা রাস্তা দিয়ে জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছেন এবং যীশু তাঁদের আগে আগে চলেছেন৷ শিষ্যেরা আশ্চর্য হচ্ছিলেন আর তাঁর সঙ্গে যাঁরা চলছিল, সেই লোকেরা ভীত হল৷ তখন তিনি আবার সেই বারোজন প্রেরিতকে নিয়ে নিজের প্রতি যা যা ঘটবে তা তাদের বলতে লাগলেন৷ 33 শোন, ‘আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি আর প্রধান যাজক এবং ব্যবস্থার শিক্ষকের হাতে মানবপুত্রকে সঁপে দেওযা হবে তারা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেবে এবং অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে৷ 34 তারা বিদ্রূপ করবে, তাঁর মুখে থুথু দেবে, তাঁকে চাবুক মারবে এবং হত্যা করবে, আর তিন দিন পরে তিনি আবার বেঁচে উঠবেন৷’ 35 পরে সিবদিয়ের ছেলে যাকোব এবং য়োহন তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘হে গুরু, আমাদের ইচ্ছা এই, আমরা আপনার কাছে যা চাইব, আপনি আমাদের জন্য তা করবেন৷’ 36 যীশু তখন তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের ইচ্ছা কি, তোমাদের জন্য আমি কি করব?’ 37 তাঁরা তাঁকে বললেন, ‘আমাদের এই বর দান করুন যাতে আপনি মহিমান্বিত হলে আমরা একজন আপনার ডানদিকে আর একজন বাঁ দিকে বসতে পাই৷’ 38 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা জান না তোমরা কি চাইছ? আমি য়ে পেযালায় পান করি, তাতে তোমরা কি চুমুক দিতে পারবে বা আমি য়ে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজ হই তাতে কি তোমরা বাপ্তাইজ হতে পারবে?’ 39 তাঁরা তাঁকে বললেন, ‘আমরা পারব!’ তখন যীশু তাদের বললেন, ‘আমি য়ে পেযালায় পান করি তাতে তোমরা অবশ্যই চুমুক দেবে এবং আমি য়ে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজ হই তাতে তোমরাও বাপ্তাইজ হবে৷ 40 কিন্তু আমার ডান দিকে বা বাঁদিকে বসতে দেবার অধিকার আমার নেই৷ কারা সেখানে বসবে তা আগেই স্থির হয়ে গেছে৷’ 41 এই কথা শুনে অন্য দশ জন য়োহন ও যাকোবের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন৷ 42 কিন্তু যীশু তাঁদের ডেকে বললেন, ‘তোমরা জান জগতের মধ্যে যাঁরা শাসনকর্তা বলে গন্য, তারা তাদের উপর প্রভুত্ব করে এবং তাদের মধ্যে যাঁরা প্রধান, তারা তাদের উপর কর্ত্তৃত্ব করে৷ 43 তোমাদের ক্ষেত্রে সেইরকম হবে না৷ তোমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রধান হতে চায়, তবে সে তোমাদের ক্রীতদাস হবে, 44 এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রধান হতে চায়, সে সকলের দাস হবে৷ 45 কারণ বাস্তবে মানবপুত্রও সেবা পেতে আসেন নি, তিনি অন্য়ের সেবা করতেই এসেছেন এবং অনেক মানুষের মুক্তিপণ হিসাবে নিজের জীবন দিতে এসেছেন৷’ 46 তারপর তাঁরা যিরীহোতে এলেন৷ তিনি যখন নিজের শিষ্যদের এবং বহুলোকের সাথে যিরীহো ছেড়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় পথের ধারে তীময়ের ছেলে বরতীময় নামে এক অন্ধ ভিখারী বসেছিল৷ 47 সে যখন শুনতে পেল য়ে উনি নাসরতীয় যীশু, তখন চেঁচিয়ে বলতে লাগল, ‘হে যীশু, দাযূদের পুত্র, আমার প্রতি দযা করুন৷’ 48 তখন বহুলোক ‘চুপ চুপ’ বলে তাকে ধমক দিল৷ কিন্তু সে আরও জোরে চেঁচিয়ে বলতে লাগল, ‘হে দাযূদের পুত্র, আমার প্রতি দযা করুন!’ 49 তখন যীশু সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে বললেন, ‘তাকে ডাকো৷’ তারা সেই অন্ধ লোকটিকে ডাকল এবং বলল, ‘ওহে সাহস কর, ওঠ, উনি তোমাকে ডাকছেন৷’ 50 তখন সে নিজের পায়ের চাদর ফেলে দিয়ে লাফ দিয়ে উঠে যীশুর কাছে এল৷ 51 যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি কি চাও, আমি তোমার জন্য কি করব?’ অন্ধ লোকটি তাকে বলল, ‘হে গুরু, আমি য়েন দেখতে পাই৷’ 52 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘যাও, তোমার বিশ্বাসই তোমায় সুস্থ করল৷’ সঙ্গে সঙ্গে সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল এবং রাস্তা দিয়ে যীশুর পেছন পেছন চলতে লাগল৷
1 এরপর তাঁরা জেরুশালেমের কাছাকাছি পৌঁছে জৈতুন পর্বতমালায় বৈত্ফগী ও বৈথনিযা গ্রামে এলেন৷ সেখানে পৌঁছে তিনি তাঁর শিষ্যদের মধ্যে দুজনকে আগে পাঠিয়ে দিলেন৷ 2 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা তোমাদের সামনের ঐ গ্রামে যাও, গ্রামে ঢুকেই দেখবে একটা বাচ্চা গাধা বাঁধা আছে, যাতে কেউ কখনও বসে নি৷ সেই গাধাটাকে খুলে আন৷ 3 যদি কেউ তোমাদের জিজ্ঞাসা করে, ‘কেন তুমি গাধাটি খুলছ? তখন তাকে বলবে, ‘এটা প্রভুর কাজে লাগবে আর সে তখনই সেটা পাঠিয়ে দেবে৷’ 4 তাঁরা সেখানে গেলেন এবং দেখলেন দরজার কাছে রাস্তার ওপর একটা গাধা বাঁধা আছে৷ তখন তাঁরা দড়িটাকে খুলতে লাগলেন, 5 আর কিছু লোক সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তারা তাঁদের বলল, ‘তোমরা কি করছ, গাধার বাচ্চাটাকে খুলছ কেন?’ 6 তাতে যীশু য়েমন বলেছিলেন, তাঁরা সেইমতো উত্তর দিলেন, তখন লোকেরা আর কিছু বলল না, গাধার বাচ্চাটাকে নিয়ে য়েতে দিল৷ 7 তাঁরা গাধার বাচ্চাটাকে যীশুর কাছে নিয়ে এসে গাধাটির উপরে তাদের জামাকাপড় পেতে দিলেন এবং যীশু তার উপরে বসলেন৷ 8 তখন অনেকে তাদের জামাকাপড় রাস্তায় পেতে দিল আর অন্য়েরা মাঠ থেকে পাতা ঝরা গাছের ডালপালা কেটে এনে রাস্তার উপরে ছড়িয়ে দিল৷ 9 আর য়ে সমস্ত লোক আগে এবং পেছনে যাচ্ছিল তারা চেঁচিয়ে বলতে লাগল,‘হোশান্না!‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন!’গীতসংহিতা 118:25-26 10 আমাদের পিতৃপুরুষ দাযূদের য়ে রাজ্য আসছে, তা ধন্য! হোশান্না! স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমা হোক্৷’ 11 তিনি জেরুশালেমে ঢুকে মন্দিরে গেলেন৷ সেখানে চারদিকের সমস্ত কিছু লক্ষ্য করলেন; কিন্তু সন্ধ্যে হয়ে যাওযায় বারোজন প্রেরিতকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বৈথনিযাতে ফিরে গেলেন৷ 12 পরের দিন বৈথনিযা ছেড়ে আসার সময় তাঁর খিদে পেল৷ 13 দূর থেকে তিনি একটি পাতায় ভরা ডুমুর গাছ দেখে তাতে কিছু ফল পাবেন ভেবে তার কাছে গেলেন, কিন্তু গাছটির কাছে গেলে পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না; কারণ তখন ডুমুর ফলের মরশুম নয়৷ 14 তখন তিনি গাছটিকে বললেন, ‘এখন থেকে তোমার ফল আর কেউ কোন দিন খাবে না!’ এই কথা তাঁর শিষ্যেরা শুনতে পেলেন৷ 15 পরে তাঁরা জেরুশালেমে গেলেন; আর মন্দিরের মধ্যে ঢুকে যাঁরা কেনা বেচা করছিল সেইসব ব্যবসাযীদের বের করে দিলেন৷ তিনি পোদ্দারদের টেবিল এবং যাঁরা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের আসন উল্টে দিলেন৷ 16 তিনি মন্দিরের মধ্যে দিয়ে কাউকে কোন জিনিস নিয়ে য়েতে দিলেন না৷ 17 তিনি শিক্ষা দিয়ে তাদের বললেন, ‘এটা কি লেখা নেই ‘আমার মন্দিরকে সমগ্র জাতির উপাসনা গৃহ বলা হবে?”কিন্তু তোমরা এটাকে দস্য়ুদের আস্তানায় পরিণত করেছ৷’ 18 প্রধান যাজকরা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা এই কথা শুনে তাঁকে হত্যা করার রাস্তা খুঁজতে থাকল, কারণ তারা তাঁকে ভয় করত, য়েহেতু তাঁর শিক্ষায় সমগ্র লোক আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল 19 সেই দিন সন্ধ্যে হলেই যীশু ও তাঁর শিষ্যরা মহানগরীর বাইরে গেলেন৷ 20 পরের দিন সকালে য়েতে য়েতে তাঁরা দেখলেন, সেই ডুমুর গাছটি মূল থেকে শুকিয়ে গেছে৷ 21 পিতর আগের দিনের কথা মনে করে তাঁকে বললেন, ‘হে গুরু, দেখুন, আপনি য়ে ডুমুর গাছটিকে অভিশাপ দিয়েছিলেন সেটি শুকিয়ে গেছে৷’ 22 তখন যীশু বললেন, ‘ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখ! 23 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি ঐ পাহাড়কে বলে, ‘উপরে যাও এবং সমুদ্রে গিয়ে পড়,’ আর তার মনে কোন সন্দেহ না থাকে এবং সে যদি বিশ্বাস করে য়ে সে যা বলছে তা হবে, তাহলে ঈশ্বর তার জন্য তাই করবেন৷ 24 এইজন্য আমি তোমাদের বলি, তোমরা যা কিছুর জন্য প্রার্থনা কর, যদি বিশ্বাস কর য়ে, তোমরা তা পেয়েছ, তাহলে তোমাদের জন্য তা হবেই৷ 25 আর তোমরা যখনই প্রার্থনা করতে দাঁড়াও, যদি কারোর বিরুদ্ধে তোমাদের কোন কথা থাকে, তাকে ক্ষমা কর, যাতে তোমাদের স্বর্গের পিতাও তোমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন৷’ 26 27 পরে তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে এলেন৷ আর যখন তিনি মন্দিরের মধ্যে দিয়ে হাঁটছেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও বয়স্ক ইহুদী নেতারা তাঁর কাছে এলেন৷ 28 তাঁরা তাকে বললেন, ‘কোন ক্ষমতায় তুমি এসব করছ? এসব করতে তোমাকে কেই বা এই ক্ষমতা দিয়েছে?’ 29 যীশু তাঁদের বললেন, ‘আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করছি, যদি তোমরা উত্তর দিতে পারো, তাহলে আমি তোমাদের বলব কোন ক্ষমতায় এসব করছি৷ 30 য়োহন য়ে বাপ্তাইজ করেছিলেন তা করার অধিকার তিনি স্বর্গ থেকে পেয়েছিলেন না মানুষের কাছ থেকে পেয়েছিলেন? আমাকে বলো৷’ 31 তখন তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বললেন, ‘যদি আমরা বলি, ‘স্বর্গ থেকে,’ তাহলে বলবে ‘তবে তোমরা তাকে বিশ্বাস কর নি কেন?’ 32 কিন্তু যদি আমরা বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে জনসাধারণ আমাদের ওপর রেগে যাবে৷’ তাঁরা জনসাধারণকে ভয় করতেন কারণ জনসাধারণের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল য়ে য়োহন একজন ভাববাদী৷ 33 তাই তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘আমরা জানি না৷’ তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘তবে আমিও কোন্ ক্ষমতায় এসব করছি, তা তোমাদের বলব না৷’
1 তখন যীশু দৃষ্টান্ত দিয়ে তাদের কাছে বলতে লাগলেন, ‘একটি লোক দ্রাক্ষা ক্ষেতের চারদিকে বেড়া দিলেন৷ তিনি দ্রাক্ষা মাড়াই করতে একটি গর্ত খুঁড়লেন, একটি উঁচু ঘর তৈরী করলেন এবং সেই ক্ষেত চাষীদের কাছে জমা দিয়ে অন্য দেশে চলে গেলেন৷ 2 এরপর চাষীদের কাছে ফলের পাওনা অংশ পাবার জন্য তাদের কাছে ঠিক সময়ে তাঁর চাকরকে পাঠিয়ে দিলেন৷ 3 কিন্তু চাষীরা তাকে মারধর করে খালি হাতে ফিরিয়ে দিল৷ 4 তিনি আর একজন চাকরকে তাদের কাছে পাঠালেন, তারা তার মাথায় আঘাত করল, 5 এবং তাকে অপমান করল৷ তখন তিনি আর একজন চাকরকে পাঠালেন, তারা তাকে মেরে ফেলল৷ এইভাবে তিনি আরো অনেককে পাঠালেন৷ তারা তাদের মধ্যে কয়েকজনকে মারধোর করল এবং কয়েকজনকে মেরেই ফেলল৷ 6 তাঁর একমাত্র প্রিয় পুত্র ছিল৷ তিনি শেষ পর্যন্ত তাঁকেই পাঠালেন, ভাবলেন তারা নিশ্চয়ই তাঁর পুত্রকে সম্মান করবে৷ 7 চাষীরা তখন নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘এই তো মালিকের ছেলে, ওর বাবা মরলে ক্ষেতের মালিক তো ওই হবে, এস! একে মেরে ফেল, তাহলে আমরা ক্ষেতের মালিক হব৷ 8 তখন তারা তাকে মেরেই ফেলল ও তার মৃতদেহটি দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ফেলে দিল৷ 9 তখন সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক কি করবেন? তিনি এসে চাষীদের মেরে ফেলবেন এবং সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতটি অন্যদের দিয়ে দেবেন৷ 10 শাস্ত্রের এই কথা কি তোমরা পড় নি, ‘য়ে পাথর রাজমিস্ত্রিরা বাতিল করেছিল সেটিই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর? 11 এটা প্রভুই করেছেন, আর আমাদের চোখে এটা খুব চমকপ্রদ৷’গীতসংহিতা 118:22-23 12 তখন তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করতে লাগল, কিন্তু লোকদের ভয় পেল, কারণ তারা জানত য়ে দৃষ্টান্তটি তিনি তাদের উদ্দেশ্যেই বলেছেন, তাই তারা তাঁকে ছেড়ে চলে গেল৷ 13 পরে ইহুদী নেতারা কয়েকজন ফরীশী এবং হেরোদীয়কে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিল, যাতে তারা যীশুকে কথার ফাঁদে ফেলতে পারে৷ 14 তারা এসে তাঁকে বলল, ‘হে গুরু, আমরা জানি আপনিই সত্, এবং আপনি কোন লোককে ভয় করেন না৷ আপনি ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সত্য শিক্ষা দেন৷ আচ্ছা, কৈসর সরকারকে কর দেওযা কি উচিত? আমরা দেব, কি দেব না?’ 15 তিনি তাদের ভণ্ডামি বুঝতে পেরে বললেন, ‘তোমরা আমায় কেন পরীক্ষা করছ? আমাকে একটি দীনার এনে দেখাও৷’ 16 তারা তাঁকে দীনার এনে দিলে তিনি তাদের বললেন, ‘এই মুখ এবং এই নাম কার?’ তারা তাঁকে বলল, ‘কৈসরের প্রতিমূর্তি, কৈসরের নাম৷’ 17 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘কৈসরের যা তা কৈসরকে দাও৷ আর ঈশ্বরের যা তা ঈশ্বরকে দাও৷’ তখন তারা তাঁর কথা শুনে বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে গেল৷ 18 পরে কয়েকজন সদ্দূকী তাঁর কাছে এল যাঁরা বলত পুনরুত্থান বলে কিছু নেই৷ তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, 19 ‘গুরু, মোশি আমাদের জন্য লিখেছেন, কারও ভাই যদি স্ত্রী রেখে মারা যায়, আর সে যদি কোন ছেলেমেয়ে না রেখে যায় তবে তার ভাই য়েন ঐ বিধবাকে বিয়ে করে নিজের ভাইয়ের বংশ রক্ষা করে৷ 20 সাত ভাই ছিল, প্রথম জন একজন স্ত্রীলোককে বিয়ে করল আর সে ছেলেমেয়ে না রেখে মারা গেল৷ 21 পরে দ্বিতীয় জন তাকে বিয়ে করল; কিন্তু সেও ছেলেমেয়ে না রেখে মারা গেল৷ তৃতীয় ভাই আগের ভাইয়ের মত বিয়ে করে ছেলেমেয়ে না রেখে মার গেল৷ 22 এই সাত ভাইয়ের কেউই কোন ছেলেমেয়ে রেখে যায় নি৷ সবশেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল৷ 23 মৃত্যুর পরে যখন তারা বেঁচে উঠবে, সে তাদের মধ্যে কার স্ত্রী হবে? কারণ তারা সাতজনই তো তাকে বিয়ে করেছিল৷’ 24 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কেন এই ভুলের মধ্যে রয়েছ? তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের শক্তির কথা৷ 25 কারণ মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত হলে তারা বিয়ে করে না, বা তাদের বিয়ে দেওযা হয় না, বরং তারা স্বর্গে স্বর্গদূতদের মতোই থাকে৷’ 26 কিন্তু পুনরুত্থান হবে কিনা এ ব্যাপারে মোশির পুস্তকে লেখা জ্বলন্ত ঝোপেরঅংশটিতে ঈশ্বর তাকে কি বলেছিলেন তা কি তোমরা পড় নি? তিনি বলেছিলেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর৷’ 27 তিনি মৃতদের ঈশ্বর নন, জীবিতদেরই ঈশ্বর৷ তোমরা বড়ই ভুল করেছ৷’ 28 ব্যবস্থার শিক্ষকদের মধ্যে একজন কাছে এসে তাদের আলোচনা শুনলেন৷ যীশু তাদের ঠিক উত্তর দিয়েছেন জেনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘শাস্ত্রে সমস্ত আদেশের মধ্যে কোনটি প্রধান?’ 29 যীশু উত্তর দিলেন, ‘এটাই প্রধান! ‘শোন, হে ইস্রায়েল, আমাদের ঈশ্বর প্রভু একমাত্র প্রভু৷ 30 তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, মন, প্রাণ ও সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে৷’ 31 আর দ্বিতীয় আদেশ হল, এই, ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে৷’এই আদেশ দুটি থেকে আর কোন বড় আদেশ নেই৷’ 32 তখন ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে বললেন, ‘বেশ, গুরু, আপনি ঠিক বলেছেন য়ে ঈশ্বরই প্রভু, তিনি ছাড়া অন্য কেউ নেই৷ 33 আর সমস্ত হৃদয়, সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁকে ভালবাসো এবং প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসা হচ্ছে সমস্ত রকম বলিদান ও উত্সর্গের থেকে অনেক ভাল৷’ 34 তখন তিনি বুদ্ধির সঙ্গে উত্তর দিয়েছেন দেখে যীশু তাঁকে বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য থেকে তুমি খুব বেশী দূরে নও৷’ এরপরে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞেস করতে আর কারো সাহস হল না৷ 35 যীশু মন্দিরে শিক্ষা দেবার সময় বললেন, ‘ব্যবস্থার শিক্ষকরা কেমন করে বলে য়ে খ্রীষ্ট দাযূদের পুত্র? 36 দাযূদ তো নিজেই পবিত্র আত্মার প্রেরণাতেই এই কথা বলেছেন: ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, ‘তুমি আমার ডানদিকে বস যতক্ষণ না তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের তলায় রাখি৷’ গীতসংহিতা 110:1 37 দাযূদ নিজেই খ্রীষ্টকে ‘প্রভু’ বলেন৷ তবে কেমন করে খ্রীষ্ট দাযূদের পুত্র হলেন?’ অনেক লোক আনন্দের সাথে তাঁর কথা শুনল৷ 38 আর তাঁর শিক্ষায় তিনি তাদের বললেন, ‘ব্যবস্থার শিক্ষকদের থেকে সাবধান, তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরতে চায়, হাটে বাজারে লোকদের সম্মান, 39 সমাজগৃহে গুরুত্বপূর্ণ আসন এবং নৈশ ভোজে গুরুত্বপূর্ণ আসন পেতে ভালবাসে৷ 40 এই লোকেরাই বিধবাদের বাড়িগুলি আত্মসাত্ করে, আর সেই দোষ ঢাকতে লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে৷ ঐ সমস্ত লোকেরা বিচারে আরো কড়া শাস্তি পাবে৷’ 41 যীশু দানের বাক্সের সামনে বসে, লোকেরা কেমন করে তাতে টাকা পয়সা ফেলছে তা দেখছিলেন৷ বহু ধনী লোক প্রচুর টাকা পয়সা তার মধ্যে রাখল৷ 42 পরে একজন গরীব বিধবা এসে তাতে দুটি তামার মুদ্রা ফেলল, যার মূল্য এক সিকিরও কম৷ 43 তখন যীশু নিজের শিষ্যদের কাছে ডেকে বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, দানবাক্সে যাঁরা টাকা পয়সা রেখেছে, তাদের সবার থেকে এই গরীব বিধবা বেশী রাখল৷ 44 কারণ তারা সকলে নিজের নিজের অতিরিক্ত অর্থ থেকে কিছু কিছু রেখেছে কিন্তু এই গরীব বিধবা তার যা কিছু সম্বল ছিল, তার সবটুকুই দিয়ে গেল৷’
1 যীশু যখন মন্দির ছেড়ে যাচ্ছেন, সেই সময় শিষ্যদের মধ্যে একজন তাঁকে বললেন, ‘হে গুরু, দেখুন কত চমত্কার বিশাল বিশাল পাথর ও কত সুন্দর দালান৷’ 2 তখন যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি এইসব বড় বড় দালান দেখছ? এর একটা পাথর আর একটা পাথরের ওপরে থাকবে না; সবই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে৷’ 3 পরে তিনি মন্দিরের সামনে জৈতুন পর্বতমালায় বসলে, পিতর, যাকোব, য়োহন এবং আন্দরিয় তাঁকে একা পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, 4 ‘আমাদের বলুন দেখি, এই সমস্ত ঘটনা কখন ঘটবে? আর কি চিহ্ন দেখেই বা বুঝতে পারব য়ে এই সমস্ত ঘটনা ঘটতে চলেছে?’ 5 তখন যীশু তাঁদের বলতে লাগলেন, ‘সতর্ক থেকো, কেউ য়েন তোমাদের না ভোলায়৷ 6 সেদিন অনেকে আমার নাম নিয়ে আসবে এবং বলবে, ‘আমিই তিনি’ এবং তারা আরও অনেকের মন ভোলাবে৷ 7 কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনবে, তখন অস্থির হযো না; এটা ঘটবেই, কিন্তু তখনও শেষ নয়৷ 8 কারণ জাতির বিরুদ্ধে জাতি এবং রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজ্য জেগে উঠবে৷ স্থানে স্থানে ভূমিকম্প, দুর্ভিক্ষ হবে৷ এসব কেবল জন্ম যন্ত্রণার আরন্ভ মাত্র৷ 9 ‘তোমরা নিজেদের ব্যাপারে সাবধান! লোকে তোমাদের আদালতে হাজির করবে এবং সমাজগৃহের মধ্যে তোমাদের ধরে মারবে৷ আমার জন্য তোমরা দেশের শাসনকর্তা ও রাজাদের কাছে সাক্ষী দেবার জন্য তাদের সামনে দাঁড়াবে৷ 10 আর সব কিছু শেষ হবার আগে সমস্ত জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করা হবে৷ 11 কিন্তু লোকে যখন তোমাদের গ্রেপ্তার করে বিচার সভায় নিয়ে যাবে তখন তাদের সামনে কি বলবে তা আগে থেকে ভেবো না, বরং সেই সময়ে পবিত্র আত্মা যা বলতে বলবেন তাই বলবে৷ কারণ তোমরাই য়ে কথা বলবে তা নয়, পবিত্র আত্মাই তোমাদের মধ্যে দিয়ে কথা বলবেন৷ 12 তখন ভাই ভাইকে ও বাবা সন্তানকে মৃত্যুর হাতে তুলে দেবে এবং সন্তানরা বাবা-মার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তাদের হত্যার জন্য ধরিয়ে দেবে৷ 13 আর আমার নামের জন্য সকলে তোমাদের ঘৃণা করবে৷ কিন্তু য়ে শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে সেই রক্ষা পাবে৷ 14 ‘যখন তোমরা দেখবে, ‘ধ্বংসের সেই ঘৃণার বস্তু য়েখানে দাঁড়াবার নয় সেখানে দাঁড়িয়ে আছে৷’পাঠকের বোঝা উচিত্ এর অর্থ কি,’তখন যাঁরা যিহূদিযাতে থাকে তারা পাহাড়ে পালিয়ে যাক৷ 15 এবং কেউ যদি ছাদে থাকে, সে য়েন বাড়ি থেকে কোন কিছু নেবার জন্য নীচে না নামে বা ঘরে না ঢোকে৷ 16 কেউ যদি মাঠে থাকে, সে য়েন জামাকাপড় নেবার জন্য ফিরে না যায়৷ 17 হায়, সেই সময়ে গর্ভবতী বা যাদের কোলে শিশু থাকবে তাদের কত কষ্ট! 18 আর প্রার্থনা কর য়েন এটা শীতকালে না ঘটে, 19 কারণ সেই সময় হবে বড়ই কষ্টের সময়৷ তেমনটি প্রথম যখন ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করলেন, তখন থেকে এখন পর্যন্ত কখনই হয় নি আর কখনও হবেও না৷ 20 আর প্রভু যদি সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে না দিতেন, তবে কোন প্রাণই রক্ষা পেত না৷ কিন্তু তিনি যাদের মনোনীত করেছেন, সেই মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন৷ 21 কেউ যদি তখন তোমাদের বলে, ‘দেখ, খ্রীষ্ট এখানে বা ওখানে আছেন, তোমরা বিশ্বাস কোরো না৷ 22 কারণ ভণ্ড খ্রীষ্টেরা এবং ভাববাদীরা উঠবে এবং নানা চিহ্ন ও অলৌকিক কাজ করে দেখাবে, এমন কি সন্ভব হলে মনোনীত লোকদেরও ভোলাবে৷ 23 কিন্তু তোমরা সাবধান থেকো৷ আমি তোমাদের আগেই সমস্ত কিছু বলে দিলাম৷ 24 ‘কিন্তু সেই সময়, সেই কষ্টের শেষে, ‘সূর্য় অন্ধকার হয়ে যাবে এবং চাঁদ আর আলো দেবে না৷ 25 আকাশ থেকে তারা খসে পড়বে, আকাশের সমস্ত শক্তি বিচলিত হবে৷’যিশাইয় 13:10, 34:4 26 ‘তখন লোকেরা দেখবে, মানবপুত্র মহামহিমায় ও পরাক্রমের সঙ্গে মেঘরথে আসছেন৷ 27 তখন মানবপুত্র তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আকাশের অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চারিবাযু থেকে তাঁর মনোনীত লোকদের সংগ্রহ করবেন৷ 28 ‘ডুমুর গাছ থেকে এই দৃষ্টান্ত শেখো; যখন তার শাখা-প্রশাখা কোমল হয়ে পাতা বের করে, তখন তোমরা জানতে পার গরম কাল এসে গেল৷ 29 ঠিক তেমনি ঐ সমস্ত ঘটনা ঘটতে দেখলেই তোমরা বুঝতে পারবে য়ে সময়খুব কাছে, এমনকি দরজার সামনে৷ 30 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সমস্ত ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত এই প্রজন্মের শেষ হবে না৷ 31 আকাশ এবং পৃথিবীর লোপ হবে, কিন্তু আমার কথা লোপ কখনও হবে না৷ 32 ‘সেই দিনের বা সেই সময়ের কথা কেউ জানে না; স্বর্গদূতরাও নয়, মানবপুত্রও নয়, কেবলমাত্র পিতাই জানেন৷ 33 সাবধান! তোমরা সতর্ক থেকো৷ কারণকখন য়ে সেই সময় হবে তোমরা তা জানো না৷ 34 সেই দিনটা এমনভাবেই আসবে য়েমন কোন লোক নিজের বাড়ি ছেড়ে বিদেশে বেড়াতে যায় এবং তার চাকরদের দাযিত্ব দিয়ে প্রত্যেকের কাজ ঠিক করে দেয় আর দ্বাররক্ষককে সজাগ থাকতে বলে৷ 35 তাই তোমরা সতর্ক থাকবে, কারণ তোমরা জান না কখন বাড়ির মালিক আসবেন, সন্ধ্যাবেলায়, কি মাঝরাতে, কুকড়া ডাকের সময় কি ভোরবেলায়৷ 36 হঠাত্ তিনি এসে য়েন না দেখেন য়ে তোমরা ঘুমিয়ে রয়েছ৷ 37 আমি তোমাদের যা বলছি, তা সবাইকে বলি, ‘সজাগ থেকো৷”
1 দুদিন পরে নিস্তারপর্ব এবং খামিরবিহীন রুটির উত্সব পর্ব৷প্রধান যাজকরা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা সেই সময়ে তাঁকে কেমন করে ছলে বলে গ্রেপ্তার করে মেরে ফেলতে পারে তারই চেষ্টা করছিলেন৷ 2 তাঁরা বললেন, ‘উত্সবের সময় আমরা এটা করব না, কারণ তাতে লোকেদের মধ্যে গণ্ডগোল বেধে যাতে পারে৷’ 3 যখন তিনি বৈথনিযাতে কুষ্ঠী শিমোনের বাড়িতে ছিলেন, তখন তিনি খেতে বসলে একটি স্ত্রীলোক শ্বেত পাথরের শিশিতে দামী সুগন্ধি জটামাংসীর তেলনিয়ে এল৷ সে শিশিটি ভেঙ্গে তাঁর মাথায় সেই তেল ঢেলে দিল৷ 4 কিছু লোক এতে খুব রেগে গিয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘সুগন্ধি তেলের অপচয় করা হল কেন? 5 এই তেল তো তিনশো দীনারের বেশী দামে বিক্রি করা য়েত এবং সেই টাকা গরীবদের দেওযা য়েত৷’ আর তারা স্ত্রীলোকটির কঠোর সমালোচনা করল৷ 6 কিন্তু যীশু বললেন, ‘ওকে য়েতে দাও৷ তোমরা কেন ওকে দুঃখ দিচ্ছ? সে তো আমার জন্য ভাল কাজই করেছে৷ 7 কারণ গরীবরা তোমাদের কাছে সবসময় আসে, তোমরা যখন ইচ্ছা তাদের উপকার করতে পার; কিন্তু আমাকে তোমরা সবসময় পাবে না৷ 8 সে যা করতে পারত তাই করেছে৷ সে আগে থেকে সমাধির উদ্দেশ্যে আমার গায়ে সুগন্ধি তেল ঢেলে দিয়েছে৷ 9 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, জগতে য়েখানেই আমার সুসমাচার প্রচার করা হবে, সেখানেই এই স্ত্রীলোকটির স্মরণার্থে তার কাজের কথা বলা হবে৷’ 10 তখন সেই বারোজনের মধ্যে একজন যিহূদা ঈষ্করিযোতীয় প্রধান যাজকদের কাছে যীশুকে ধরিয়ে দেবার মতলবে গেল৷ 11 তারা এই কথা শুনে খুব খুশী হলো এবং তাকে টাকা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিল৷ তখন সে যীশুকে ধরিয়ে দেবার জন্য সুয়োগ খুঁজতে লাগল৷ 12 খামিরবিহীন রুটির পর্বের প্রথম দিন, য়েদিন ইহুদীরা মেষ উত্সর্গ করত, সেইদিন তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, ‘আমরা কোথায় গিয়ে আপনার জন্য ভোজ প্রস্তুত করব, আপনার ইচ্ছা কি?’ 13 তখন তিনি শিষ্যদের মধ্যে দুজনকে পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা শহরে যাও, একটা লোক তোমাদের সামনে পড়বে, য়ে এক কলসী জল নিয়ে আসবে, তাকে অনুসরণ কর৷ 14 সে য়ে বাড়িতে ঢুকবে সেই বাড়ির মালিককে বলবে, ‘গুরু বলেছেন, সেই অতিথির ঘর কোথায় য়েখানে আমি আমার শিষ্যদের সাথে নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে পারি৷’ 15 তখন সে ওপরের একটি বড় সাজানো গোছান ঘর দেখিয়ে দেবে৷ সেখানেই আমাদের জন্য ভোজ প্রস্তুত করো৷’ 16 পরে শিষ্যরা সেখান থেকে শহরে চলে এলেন৷ তিনি য়েরকম বলেছিলেন তাঁরা ঠিক সেইরকম দেখতে পেলেন; আর নিস্তারপর্বের ভোজের আযোজন সেখানেই করলেন৷ 17 সন্ধ্যে হলে সেই বারো জন প্রেরিতদের সাথে তিনি সেখানে এলেন৷ 18 যখন তাঁরা একসঙ্গে খেতে বসেছেন, যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যাঁরা আমার সঙ্গে খেতে বসেছ, তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে৷’ 19 এতে তাঁরা অত্যন্ত দুঃখ পেলেন এবং প্রত্যেকে এক এক করে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে কি আমি?’ 20 তিনি তাদের বললেন, ‘এই বারোজনের মধ্যে য়ে জন আমার সঙ্গে বাটিতে রুটি ডুবিয়ে খাচ্ছে সেই সে জন৷ 21 মানবপুত্রের ব্যাপারে শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে, ঠিক সেইভাবে তিনি চলে যাবেন৷ কিন্তু ধিক্ সেই লোকটিকে য়ে মানবপুত্রকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে৷ সেই লোকটির জন্ম না হওযাই ভাল ছিল৷ 22 তাঁরা যখন খাচ্ছিলেন, সেই সময় তিনি রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন৷ রুটি খানি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে তা শিষ্যদের দিয়ে বললেন, ‘এটা নাও: এটা আমার শরীর৷’ 23 তারপর তিনি পেযালা তুলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে শিষ্যদের হাতে দিলেন৷ আর তাঁরা সকলে তা থেকে পান করলেন৷ 24 তিনি তাঁদের বললেন, ‘এটা আমার নতুন নিয়মের রক্ত যা অনেকের জন্যই পাতিত হবে৷ 25 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমি আর দ্রাক্ষারস পান করব না, যতদিন পর্যন্ত না আমি ঈশ্বরের রাজ্যে সেই দিনে নতুন দ্রাক্ষারস পান না করি৷’ 26 এরপর তাঁরা স্তবগান করে জৈতুন পর্বতের দিকে গেলেন৷ 27 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা সকলে বিশ্বাস হারাবে, কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমি মেষপালককে আঘাত করব এবং মেষেরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে৷’সখরিয় 13:7 28 আমি বেঁচে উঠলে, তোমাদের আগে গালীলে যাব৷’ 29 পিতর তাঁকে বললেন, ‘এমনকি সকলে বিশ্বাস হারালেও আমি হারাব না৷’ 30 তখন যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি সত্যি বলছি, আজ এই রাতেই দুবার মোরগ ডাকার আগে তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷’ 31 কিন্তু পিতর আরও জোর দিয়ে বললেন, ‘যদি আপনার সঙ্গে মরতেও হয়, তবুও আমি আপনাকে অস্বীকার করব না৷’ বাকি সকলে সেই একই শপথ করলেন৷ 32 তখন তাঁরা গেত্শিমানী নামে একস্থানে এলেন৷ আর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘যতক্ষণ আমি প্রার্থনা করি, তোমরা এখানে বসে থাক৷’ 33 পরে তিনি পিতর, যাকোব এবং য়োহনকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, সেসময় ব্যথায় তাঁর আত্মা ব্যাকুল হয়ে উঠল৷ 34 তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমার প্রাণ মৃত্যু পর্যন্ত উদ্বেগে আচ্ছন্ন৷ তোমরা এখানে থাক আর জেগে থাক৷’ 35 পরে কিছুটা এগিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে তিনিপ্রার্থনা করলেন য়ে যদি সন্ভব হয় তবে এই দুঃখের সময়টা তাঁর কাছ থেকে সরে যাক৷ 36 তিনি বললেন, ‘আব্বা, পিতা তোমার পক্ষে তো সবই সন্ভব৷ এই পানপাত্রআমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নাও৷ কিন্তু তবুও আমি যা চাই তা নয়; তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক৷’ 37 পরে তিনি এসে দেখলেন তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর তিনি পিতরকে বললেন, ‘শিমোন তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ? তুমি একঘন্টাও জেগে থাকতে পারলে না? 38 তোমরা জেগে থাক এবং প্রার্থনা কর, যাতে প্রলুধ্ধ না হও৷ আত্মা ইচ্ছুক কিন্তু শরীর দুর্বল৷’ 39 তিনি আবার গেলেন এবং একই কথা বলে প্রার্থনা করলেন৷ 40 তারপর ফিরে এসে দেখলেন তাঁরা ঘুমাচ্ছেন, কারণ ঘুমে তাদের চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল৷ তাঁরা যীশুর দিকে তাকিয়ে তাঁকে কি বলবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না৷ 41 পরে তিনি তৃতীয়বার এসে তাঁদের বললেন, ‘তোমরা কি এখনও ঘুমোচ্ছ, বিশ্রাম করছ? যথেষ্ট হয়েছে৷ সময় হয়ে গেছে৷ দেখ, মানবপুত্রকে বিশ্বাসঘাতকতা করে পাপীদের হাতে তুলে দেওযা হচ্ছে৷ 42 ওঠ! আমরা যাই! ঐ দেখ, য়ে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সে আসছে৷’ 43 আর তিনি যখন কথা বলছিলেন, সেই সময় যিহূদা, সেই বারোজন প্রেরিতের মধ্যে একজন এল৷ আর তার সাথে অনেক লোক তরোয়াল লাঠি নিয়ে এল৷ প্রধান যাজক, ব্যবস্থার শিক্ষক এবং বয়স্ক ইহুদী নেতারা এই লোকদের পাঠিয়েছিলেন৷ 44 সেই বিশ্বাসঘাতক যিহূদা তাদের এই সঙ্কেত দিয়েছিল; ‘যাকে আমি চুমু দেব, সেই ঐ লোকটি৷ তোমরা তাকে ধরে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাবে৷’ 45 সে উপস্থিত হয়েই যীশুর কাছে গিয়ে বলল, ‘গুরু!’ বলেই তাঁকে চুমু দিল৷ 46 তখন তারা তাঁকে ধরে গ্রেপ্তার করল৷ 47 যাঁরা তাঁর কাছে দাঁড়িয়েছিল তাদের মধ্যে একজন নিজের তরোয়াল বের করে মহাযাজকের চাকরকে আঘাত করে তার কান কেটে দিল৷ 48 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা লাঠি, তরোযাল নিয়ে আমাকে ধরতে এসেছ৷ মনে হচ্ছে আমি একজন দস্যু৷ 49 আমি প্রতিদিন মন্দিরে তোমাদের মধ্যে থেকেছি ও শিক্ষা দিয়েছি, তখন তো আমায় ধরলে না৷ কিন্তু শাস্ত্রের বাণী সফল হবেই৷’ 50 তখন তাঁর সব শিষ্যেরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে গেলেন৷ 51 আর একজন যুবক উলঙ্গ শরীরে একটি চাদর জড়িয়ে তাঁকে অনুসরণ করল৷ তারা তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করল৷ 52 কিন্তু সে চাদরটি ফেলে উলঙ্গ অবস্থায় পালিয়ে গেল৷ 53 তখন তারা যীশুকে মহাযাজকের কাছে নিয়ে এল৷ প্রধান যাজকরা, বয়স্ক ইহুদী নেতারা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা সকলে এক জায়গায় জড়ো হলেন৷ 54 আর পিতর দূরে দূরে থেকে যীশুর পেছনে য়েতে য়েতে মহাযাজকের উঠোন পর্যন্ত গেলেন এবং রক্ষীদের সঙ্গে বসে আগুন পোহাতে লাগলেন৷ 55 তখন প্রধান যাজকরা এবং মহাসভার সকলেই এমন একজন সাক্ষী খুঁজছিলেন যার কথার জোরে যীশুকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা যায়; কিন্তু তেমন সাক্ষ্য তারা পেলেন না৷ 56 কারণ অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিল বটে কিন্তু তাদের সাক্ষ্য মিলল না৷ 57 তখন কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে বলল, 58 ‘আমরা তাঁকে বলতে শুনেছি, ‘মানুষের হাতে তৈরী এই মন্দিরটি ভেঙ্গে ফেলব এবং তিন দিনের মধ্যে মানুষের হাত দিয়ে তৈরী নয় এমনই একটি মন্দির আমি গড়ে তুলব৷” 59 কিন্তু এতেও তাদের সাক্ষ্যের প্রমাণ মিলল না৷ 60 তখন মহাযাজক সকলের সামনে দাঁড়িয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি কিছুই উত্তর দেবে না? এই সমস্ত লোকরা তোমার বিরুদ্ধে কি সাক্ষ্য দিচ্ছে?’ 61 কিন্তু তিনি চুপচাপ থাকলেন, কোন উত্তর দিলেন না৷ আবার মহাযাজক তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি সেই পরম খ্রীষ্ট পরম ধন্য, ঈশ্বরের পুত্র?’ 62 যীশু বললেন, ‘হ্যাঁ, আমিই ঈশ্বরের পুত্র৷ তোমরা একদিন মানবপুত্রকে ঈশ্বরের ডানপাশে বসে থাকতে আকাশের মেঘে আবৃত হয়ে আসতে দেখবে৷’ 63 তখন মহাযাজক তাঁর পোশাক ছিঁড়ে বললেন, ‘আমাদের সাক্ষীর আর কি প্রযোজন? 64 তোমরা তো ঈশ্বর নিন্দা শুনলে৷ তোমাদের কি মনে হয়?’ তারা সকলে তাঁকে দোষী স্থির করে বলল, ‘এঁর মৃত্যুদণ্ড হওযা উচিত৷’ 65 তখন কেউ কেউ তাঁর মুখে থুথু ছিটিয়ে দিল, তাঁর মুখ ঢেকে ঘুষি মারল এবং বলতে লাগল, ‘ভাববাণী করে বল তো, কে তোমাকে ঘুষি মারল?’ পরে রক্ষীরা তাঁকে মারতে মারতে নিয়ে গেল৷ 66 পিতর যখন নীচে উঠোনে ছিলেন, তখন মহাযাজকের একজন চাকরানী এল৷ 67 সে পিতরকে আগুন পোহাতে দেখে তাঁর দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুমিও তো নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিলে?’ 68 কিন্তু পিতর অস্বীকার করে বললেন, ‘আমি জানি না, আর বুঝতেও পারছি না তুমি কি বলছ?’ এই বলে তিনি বারান্দার দিকে য়েতেই একটা মোরগ ডেকে উঠল৷ 69 কিন্তু চাকরানীটা তাকে দেখে, যাঁরা তার কাছে দাঁড়িয়েছিল তাদের বলতে লাগল, ‘এই লোকটি ওদেরই একজন!’ 70 তিনি আবার অস্বীকার করলেন৷ কিছুক্ষণ বাদে যাঁরা সেখানে দাঁড়িয়েছিল তারা পিতরকে বলল, ‘সত্যি তুমি তাদের একজন, কারণ তুমি গালীলের লোক৷’ 71 তিনি অভিশাপ দিয়ে শপথ করে বলতে লাগলেন, ‘তোমরা য়ে লোকটির কথা বলছ, তাকে আমি চিনি না৷’ 72 আর সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়বার মোরগটি ডেকে উঠল, তাতে যীশু য়ে কথা বলেছিলেন, ‘মোরগটি দুবার ডাকার আগে তুমি তিনবার আমাকে অস্বীকার করবে’ সে কথা পিতরের মনে পড়ল আর তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন৷
1 সকাল হতেই প্রধান যাজকরা, বয়স্ক ইহুদী নেতারা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও সমস্ত মহাসভার লোকেরা শলাপরামর্শ করলেন৷ তাঁরা যীশুকে বেঁধে পীলাতের কাছে পাঠালেন এবং তাঁর হাতে তুলে দিলেন৷ 2 তখন পীলাত তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’যীশু তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, আপনি য়েমন বললেন তেমনই৷’ 3 তখন প্রধান যাজকরা যীশুর বিরুদ্ধে নানান দোষের কথা বলতে লাগলেন৷ 4 পীলাত তাঁকে আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি কিছুই উত্তর দেবে না? দেখ, এরা তোমার বিরুদ্ধে কত অভিযোগ করছে!’ 5 কিন্তু তবু যীশু কোন উত্তর দিলেন না দেখে পীলাত আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 6 নিস্তারপর্বের সময়ে পীলাত লোকদের ইচ্ছে মতো একজন বন্দীকে মুক্ত করে দিতেন৷ 7 সেই সময় বারাব্বা নামে একটি লোক বিদ্রোহীদের সাথে কারাগারে ছিল, যাঁরা বিদ্রোহের সময় অনেক খুন জখম করেছিল৷ 8 আর তিনি পীলাত লোকদের জন্য সচরাচর যা করতেন, সেই লোকেরা তাকে তাই করতে বলল৷ 9 পীলাত তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইহুদীদের রাজাকে আমি তোমাদের জন্য মুক্ত করে দিই, এটাই কি তোমাদের ইচ্ছা?’ 10 কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন প্রধান যাজকরা হিংসার বশবর্তী হয়ে যীশুকে তার হাতে তুলে দিয়েছিল৷ 11 কিন্তু প্রধান যাজকরা জনতাকে ক্ষেপিয়ে তুলল যাতে তারা যীশুর পরিবর্তে বারাব্বার মুক্তি দাবি করে৷ 12 কিন্তু পীলাত আবার তাদের বললেন, ‘তবে তোমরা যাকে ইহুদীদের রাজা বল তাকে কি করব?’ 13 তারা চেঁচিয়ে বলল, ‘ওকে ক্রুশে দাও!’ 14 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘কেন? এ কি মন্দ কাজ করেছে?’ তারা আরও চেঁচিয়ে বলল, ‘ওকে ক্রুশে দাও!’ 15 তখন পীলাত লোকদের খুশী করতে বারাব্বাকে তাদের জন্য ছেড়ে দিলেন এবং যীশুকে চাবুক মেরে ক্রুশে বিদ্ধ করবার জন্য তাদের হাতে তুলে দিলেন৷ 16 পরে সেনারা প্রাসাদের মধ্যে অর্থাত্ প্রধান শাসনকর্তার সদর দপ্তরের উঠোনে যীশুকে নিয়ে গিয়ে সমস্ত সেনাদের ডাকল৷ 17 তারা যীশুকে বেগুনী রঙের কাপড় পরিয়ে দিল এবং কাঁটার মুকুট তৈরী করে তাঁর মাথায় চাপিয়ে দিল৷ 18 তারা তাঁকে অভিবাদন জানিয়ে বলতে লাগল, ‘ইহুদীদের রাজা নমস্কার!’ 19 তারা তাঁর মাথায় একটা লাঠি দিয়ে বার বার মারতে লাগল ও তাঁর গায়ে থুথু ছিটিয়ে দিল৷ তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে তাঁকে প্রণাম করতে থাকল৷ 20 তাঁকে নিয়ে এইভাবে মজা করবার পর তারা ঐ বেগুনী রঙের কাপড় খুলে নিয়ে তাঁর নিজের কাপড় পরিয়ে দিল৷ আর ক্রুশে দেবার জন্য তাঁকে বাইরে নিয়ে গেল৷ 21 সেই সময় শিমোন নামে একটা লোক কুরীশীর গ্রামাঞ্চল থেকে সেই পথ ধরে আসছিল৷ সে আলেকসান্দর ও রূফের বাবা৷ সেনারা তাকে যীশুর ক্রুশ বয়ে নিয়ে যাবার জন্য বেগার ধরল৷ 22 পরে তারা যীশুকে গলগথা নামে এক জায়গায় নিয়ে এল৷ গলগথার অর্থ ‘মাথার খুলির স্থান৷’ 23 তারা তাঁকে গন্ধরস মেশানো দ্রাক্ষারস পান করতে দিল; কিন্তু তিনি তা পান করলেন না৷ 24 পরে তারা তাঁকে ক্রুশে বিদ্ধ করল৷ তাঁর কাপড়গুলোকে আলাদা আলাদা করে ঘুঁটি চেলে ঠিক করল কে তাঁর পোশাকের কোন অংশ পাবে৷ 25 সকাল ন’টার সময়ে তারা তাঁকে ক্রুশে দিল৷ 26 তারা তাঁর ক্রুশের ওপর তাঁর বিরুদ্ধে দোষপত্র লেখা একটা ফলক লাগিয়ে দিয়েছিল৷ তাতে লেখা ছিল, ‘ইহুদীদের রাজা৷’ 27 তারা তাঁর সাথে আর দুজন দস্য়ুকে ক্রুশে দিল৷ একজনকে তাঁর ডানদিকে এবং অপরজনকে তার বাঁদিকে৷ 28 29 লোকেরা সেই পথ দিয়ে য়েতে য়েতে যীশুর নিন্দা করতে লাগল৷ তারা মাথা নেড়ে বলল, ‘ওহে, তুমি না মন্দির ভেঙ্গে ফেলে তিনদিনের মধ্যে তা আবার গেঁথে তোল? 30 ক্রুশ থেকে নেমে নিজেকে রক্ষা কর৷’ 31 ঠিক একইভাবে প্রধান যাজকরা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে ঠাট্টা করে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, ‘ঐ লোকটি অন্যদের রক্ষা করত, কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পারে না৷ 32 খ্রীষ্ট, ঐ ইস্রায়েলের রাজা এখন ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, তাহলে আমরা বিশ্বাস করব৷’ তাঁর সঙ্গে যাঁরা ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিল, তারাও তাঁকে ঠাট্টা করতে লাগল৷ 33 পরে বেলা বারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত সমস্ত দেশ অন্ধকারে ছেয়ে গেল৷ 34 আর তিনটের সময় যীশু চিত্কার করে উঠলেন, ‘এলোই, এলোই, লামা শবক্তানী?’ যার অর্থ ‘ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় ত্যাগ করেছ?’৷ 35 যাঁরা তাঁর কাছে দাঁড়িয়েছিল, তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই কথা শুনে বলল, ‘দেখ, ও এলীয়কে ডাকছে৷’ 36 একজন লোক দৌড়ে গিয়ে একটা স্পঞ্জ এনে সিরকায় ভিজিয়ে নলে করে তাঁর মুখে তুলে ধরে বলল, ‘দেখা যাক, এলীয় ওকে নামাতে আসে কি না৷’ 37 পরে যীশু জোরে চিত্কার করে উঠে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন৷ 38 আর মন্দিরের পর্দা উপর থেকে নীচে পর্যন্ত চিরে দুভাগ হয়ে গেল৷ 39 আর য়ে সেনাপতি তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি যীশুকে এইভাবে মৃত্যুবরণ করতে দেখে বললেন, ‘সত্যিই ইনি ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন৷’ 40 কয়েকজন স্ত্রীলোক দূর থেকে দেখছিলেন, তাদের মধ্যে মগ্দলীনী মরিয়ম, শালোমী আর ছোট যাকোব এবং য়োশির মা মরিয়ম সেখানে ছিলেন৷ 41 যখন যীশু গালীলে ছিলেন, তখন এই মহিলারা তাঁর সঙ্গে য়েতেন এবং তাঁর দেখাশোনা করতেন৷ আরও বহু স্ত্রীলোক তখন সেখানে ছিলেন যাঁরা যীশুর সাথে জেরুশালেমে এসেছিলেন৷ 42 সেই দিনটা ছিল আযোজনের দিন অর্থাত্ বিশ্রামের আগের দিন৷ 43 সন্ধ্যাবেলায় আরিমাথিযার য়োষেফ এলেন, তিনি ছিলেন ইহুদী মহাসভার একজন মাননীয় সভ্য়, যিনি ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য অপেক্ষা করছিলেন৷ তিনি সাহস করে পীলাতের কাছে গিয়ে সমাধি দেওযার জন্য যীশুর দেহটি চাইলেন৷ 44 যীশু এর মধ্যে মারা গেছেন শুনে পীলাত আশ্চর্য হলেন, তিনি তাই সেনাপতিকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন তাঁর মৃত্যু হয়েছে কিনা৷ 45 সেনাপতির কাছে মৃত্যুর খবরটি জানতে পেরে তিনি য়োষেফকে যীশুর দেহটি নিয়ে য়েতে দিলেন৷ 46 য়োষেফ কিছুটা মসীনা কাপড় কিনে ক্রুশ থেকে যীশুর দেহ নামিয়ে ঐ মসীনা কাপড়ে জড়ালেন এবং পাথর কেটে তৈরী এমন একটা সমাধিগুহার মধ্যে তাঁর দেহটাকে রাখলেন৷ তারপর একটা পাথর গুহার মুখে গড়িয়ে সমাধির মুখটি বন্ধ করে দিলেন৷ 47 যীশুকে য়েখানে সমাধি দেওযা হল সেই স্থানটি মরিয়ম মগ্দলীনী ও য়োশির মা মরিয়ম দেখলেন৷
1 বিশ্রাম শেষ হলে মরিয়ম মগ্দলীনী, যাকোবের মা মরিয়ম সুগন্ধি মশলা কিনলেন য়েন গিয়ে যীশুর দেহে মাখাতে পারেন৷ 2 সপ্তাহের প্রথম দিন ভোরে, ঠিক সূর্য় ওঠার পরই তাঁরা সমাধিগুহার কাছে গেলেন৷ 3 তাঁরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, ‘কে আমাদের জন্য সমাধিগুহার মুখ থেকে পাথরটি সরিয়ে দেবে?’ 4 তখন তাঁরা দেখতে পেলেন য়ে পাথরটা সরানো রয়েছে৷ সেই পাথরটা মস্ত বড় ছিল৷ 5 পরে তাঁরা সমাধিগুহার ভিতরে গিয়ে দেখলেন, একজন যুবক ডানদিকে সাদা পোশাক পরে বসে আছেন; তাতে তারা ভয়ে চমকে উঠলেন৷ 6 তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘ভয় পেও না৷ তোমরা তো নাসরতীয় যীশুর খোঁজ করছ যাকে ক্রুশে বিদ্ধ করা হয়েছিল? তিনি বেঁচে উঠেছেন! তিনি এখানে নেই৷ দেখ, এখানে তাঁকে রাখা হয়েছিল৷ 7 যাও, পিতর ও তাঁর অন্যান্য শিষ্যদের বল গিয়ে, দেখ তিনি তোমাদের আগেই গালীলে যাচ্ছেন৷ তিনি য়েমন তোমাদের বলেছিলেন, ঠিক সেখানে তাঁকে দেখতে পাবে৷’ 8 তখন তারা সমাধিগুহা থেকে বেরিয়ে দৌড়ালেন, কারণ তাঁর ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন এবং কিছুই বুঝে উঠতে পারলেন না৷ তাঁরা কাউকে কিছু বললেন না, কারণ তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন৷ 9 তাঁর পুনরুত্থানের পর সপ্তাহের প্রথম দিনে অর্থাত্ রবিবার ভোরে, তিনি প্রথমে মগ্দলীনী মরিয়মকে দেখা দিলেন, যার থেকে তিনি সাতটা ভূতকে তাড়িয়েছিলেন৷ 10 মরিয়ম গিয়ে যাঁরা যীশুর সঙ্গে থাকতেন তাঁদের এই কথা বললেন৷ তাঁরা তখনও শোকে কাঁদছিলেন; 11 কিন্তু যখন শুনলেন য়ে যীশু বেঁচে আছেন এবং তাঁকে দেখা দিয়েছেন, তাঁরা ঐ কথা বিশ্বাস করলেন না৷ 12 পরে তাদের মধ্যে দুজন যখন গ্রামের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন এমন সময় তিনি তাঁদের দেখা দিলেন, আর তাঁকে অন্যরকম দেখাল৷ 13 তাঁরা গিয়ে অন্য বাকী সব শিষ্যদের এটা জানালেন, কিন্তু তাঁদের কথাতেও তাঁরা বিশ্বাস করলেন না৷ 14 পরে সেই এগারোজন শিষ্য যখন খেতে বসেছেন, তিনি তাঁদের কাছে দেখা দিলেন৷ তিনি তাঁদের অবিশ্বাস ও কঠোর মনোভাবের জন্য তিরস্কার করলেন, কারণ তিনি বেঁচে ওঠার পর যাঁরা তাঁকে দেখেছিলেন, তাঁদের কথায়ও তাঁরা বিশ্বাস করেন নি৷ 15 আর তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা সমস্ত পৃথিবীতে যাও, এবং সব লোকের কাছে সুসমাচার প্রচার কর৷ 16 যাঁরা বিশ্বাস করে বাপ্তাইজ হবে, তারা রক্ষা পাবে, কিন্তু যাঁরা বিশ্বাস করবে না, তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে৷ 17 যাঁরা বিশ্বাস করবে এই চিহ্নগুলি তাদের অনুবর্তী হবে৷ আমার নামে তারা ভূত তাড়াবে; নতুন নতুন ভাষায় কথা বলবে; 18 হাতে করে সাপ তুলবে এবং মারাত্মক কিছু খেলেও তাদের কোন ক্ষতি হবে না; আর তারা অসুস্থ লোকের ওপর হাত রাখলে তারা সুস্থ হবে৷’ 19 তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর প্রভু যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওযা হল এবং তিনি ঈশ্বরের ডানদিকে বসলেন৷ 20 আর তাঁরা গিয়ে সব জায়গায় সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন, এবং প্রভু তাঁদের সঙ্গে কাজ করলেন, আর অলৌকিক কাজের মধ্য দিয়ে তাঁর সুসমাচারের সত্যতা প্রমাণ করলেন৷
1 মাননীয় থিয়ফিল, আমাদের মধ্যে য়ে সব ঘটনা ঘটেছে সেগুলির বিবরণ লিপিবদ্ধ করার জন্য বহু ব্যক্তি চেষ্টা করেছেন৷ 2 তাঁরা সেই একই বিষয় লিখেছেন, যা আমরা জেনেছি তাঁদের কাছ থেকে, যাঁরা প্রথম থেকে নিজেদের চোখে দেখেছেন এবং এই বার্তা ঘোষণা করেছেন৷ 3 তাই আমার মনে হল য়ে যখন আমি সেই সব বিষয় প্রথম থেকে ভালভাবে খোঁজ খবর নিয়েছি তখন তা সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখি৷ 4 যার ফলে আপনি জানবেন, য়ে বিষয়গুলি আপনাকে জানানো হয়েছে সেগুলি সত্য৷ 5 যিহূদিযার রাজা হেরোদের সময়ে সখরিয় নামে একজন যাজক ছিলেন৷ ইনি ছিলেন অবিয়ের দলেরযাজকদের একজন৷ সখরিয়র স্ত্রী ইলীশাবেত্ ছিলেন হারোণের বংশধর৷ 6 তাঁরা উভয়েই ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধার্মিক ছিলেন৷ প্রভুর সমস্ত আদেশ ও বিধি-ব্যবস্থা তাঁরা নিখুঁতভাবে পালন করতেন৷ 7 ইলীশাবেত্ বন্ধ্যা হওযার দরুন তাঁদের কোন সন্তান হয় নি৷ তাঁদের উভয়েরই অনেক বয়স হয়ে গিয়েছিল৷ 8 একবার তাঁর দলের যাজকদের ওপর দাযিত্বভার পড়েছিল, তখন সখরিয় যাজক হিসেবে মন্দিরে ঈশ্বরের সেবা করছিলেন৷ 9 যাজকদের কার্য়প্রণালী অনুযাযী তাঁকে বেছে নেওযা হয়েছিল য়েন তিনি মন্দিরের মধ্যে গিয়ে প্রভুর সামনে ধূপ জ্বালাতে পারেন৷ 10 ধূপ জ্বালাবার সময় বাইরে অনেক লোক জড় হয়ে প্রার্থনা করছিল৷ 11 এমন সময় প্রভুর এক স্বর্গদূত সখরিয়র সামনে এসে উপস্থিত হয়ে ধূপবেদীর ডানদিকে দাঁড়ালেন৷ 12 সখরিয় সেই স্বর্গদূতকে দেখে চমকে উঠলেন এবং খুব ভয় পেলেন৷ 13 কিন্তু স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘সখরিয় ভয় পেও না, কারণ তুমি য়ে প্রার্থনা করেছ, ঈশ্বর তা শুনেছেন৷ তোমার স্ত্রী ইলীশাবেতের একটি পুত্র সন্তান হবে, তুমি তার নাম রাখবে য়োহন৷ 14 সে তোমার জীবনে আনন্দ ও সুখের কারণ হবে, তার জন্মের দরুণ আরো অনেকে আনন্দিত হবে৷ 15 কারণ প্রভুর দৃষ্টিতে য়োহন হবে এক মহান ব্যক্তি৷ সে অবশ্যই দ্রাক্ষারস বা নেশার পানীয় গ্রহণ করবে না৷ জন্মের সময় থেকেই য়োহন পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হবে৷ 16 ইস্রায়েলীয়দের অনেক লোককেই সে তাদের প্রভু ঈশ্বরের পথে ফেরাবে৷ 17 য়োহন এলীয়েরআত্মায় ও শক্তিতে প্রভুর আগে চলবে৷ সে পিতাদের মন তাদের সন্তানদের দিকে ফেরাবে, আর অধার্মিকদের মনের ভাব বদলে ধার্মিক লোকদের মনের ভাবের মতো করবে৷ প্রভুর জন্য সে এইভাবে লোকদের প্রস্তুত করবে৷’ 18 তখন সখরিয় সেই স্বর্গদূতকে বললেন, ‘আমি কিভাবে জানব য়ে সত্যিই এসব হবে? কারণ আমি তো বৃদ্ধ হয়ে গেছি, আর আমার স্ত্রীরও অনেক বয়স হয়ে গেছে৷’ 19 এর উত্তরে স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘আমি গাব্রিয়েল, ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি; আর তোমার সঙ্গে কথা বলার জন্য ও তোমাকে এই সুখবর দেবার জন্যই আমাকে পাঠানো হয়েছে৷ 20 কিন্তু জেনে রেখো! এইসব ঘটনা ঘটা পর্যন্ত তুমি বোবা হয়ে থাকবে, কথা বলতে পারবে না, কারণ তুমি আমার কথা বিশ্বাস করলে না, কিন্তু আমার এইসব কথা নিরুপিত সময়েই পূর্ণ হবে৷’ 21 এদিকে বাইরে লোকেরা সখরিয়র জন্য অপেক্ষা করছিল, তিনি এতক্ষণ পর্যন্ত মন্দিরের মধ্যে কি করছেন একথা ভেবে তারা অবাক হচ্ছিল৷ 22 পরে তিনি যখন বেরিয়ে এলেন, তখন লোকদের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন না, এতে লোকেরা বুঝতে পারল মন্দিরের মধ্যে তিনি নিশ্চয়ই কোন দর্শন পেয়েছেন৷ তিনি লোকদের ইশারায় তাঁর বক্তব্য বোঝাতে লাগলেন, কিন্তু কোনরকম কথা বলতে পারলেন না৷ 23 এরপর দৈনিক সেবাকার্য়ের শেষে তিনি তাঁর বাড়ি ফিরে গেলেন৷ 24 এর কিছুক্ষণ পরে তার স্ত্রী ইলীশাবেত্ গর্ভবতী হলেন; আর পাঁচ মাস পর্যন্ত লোক সাক্ষাতে বের হলেন না৷ তিনি বলতেন, 25 ‘এখন প্রভুই এইভাবে আমায় সাহায্য করেছেন! সমাজে আমার য়ে লজ্জা ছিল, কৃপা করে এখন এইভাবে তিনি তা দূর করে দিলেন৷’ 26 ইলীশাবেত্ যখন ছমাসের গর্ভবতী, তখন ঈশ্বর গাব্রিয়েল, স্বর্গদূতকে গালীলে নাসরত্ নগরে এক কুমারীর কাছে পাঠালেন৷ এই কুমারী ছিলেন য়োষেফ নামে এক ব্যক্তির বাগদত্তা৷ য়োষেফ ছিলেন রাজা দাযূদের বংশধর, আর য়ে কুমারীর কাছে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল তাঁর নাম মরিয়ম৷ 27 28 গাব্রিয়েল মরিয়মের কাছে এসে বললেন, ‘তোমার মঙ্গল হোক্! প্রভু তোমার প্রতি মুখ তুলে চেয়েছেন, তিনি তোমার সঙ্গে আছেন৷’ 29 এই কথা শুনে মরিয়ম খুবই বিচলিত ও অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন, ‘এ কেমন শুভেচ্ছা?’ 30 স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘মরিয়ম তুমি ভয় পেও না, কারণ ঈশ্বর তোমার ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন৷ 31 শোন! তুমি গর্ভবতী হবে আর তোমার এক পুত্র সন্তান হবে৷ তুমি তাঁর নাম রাখবে যীশু৷ 32 তিনি হবেন মহান, তাঁকে পরমেশ্বরের পুত্র বলা হবে, আর প্রভু ঈশ্বর তাঁর পিতৃপুরুষ রাজা দাযূদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন৷ 33 তিনি যাকোবের বংশের লোকদের ওপরে চিরকাল রাজত্ব করবেন, তাঁর রাজত্বের কখনও শেষ হবে না৷’ 34 তখন মরিয়ম স্বর্গদূতকে বললেন, ‘এ কেমন করে সন্ভব? কারণ আমি তো কুমারী!’ 35 এর উত্তরে স্বর্গদূত বললেন, ‘পবিত্র আত্মাতোমার ওপর অধিষ্ঠান করবেন আর পরমেশ্বরের শক্তি তোমাকে আবৃত করবে; তাই য়ে পবিত্র শিশুটি জন্মগ্রহণ করবে তাঁকে ঈশ্বরের পুত্র বলা হবে৷ 36 আর শোন, তোমার আত্মীযা ইলীশাবেত্ যদিও এখন অনেক বৃদ্ধা তবু সে গর্ভে পুত্রসন্তান ধারণ করছে৷ এই স্ত্রীলোকের বিষয়ে লোকে বলত য়ে তার কোন সন্তান হবে না, কিন্তু সে এখন ছমাসের গর্ভবতী৷ 37 কারণ ঈশ্বরের পক্ষে কোন কিছুই অসাধ্য নয়!’ 38 মরিয়ম বললেন, ‘আমি প্রভুর দাসী৷ আপনি যা বলেছেন আমার জীবনে তাই হোক্!’ এরপর স্বর্গদূত মরিয়মের কাছ থেকে চলে গেলেন৷ 39 তখন মরিয়ম উঠে তাড়াতাড়ি করে যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলের একটি নগরে গেলেন৷ 40 সেখানে সখরিয়র বাড়িতে গিয়ে ইলীশাবেতকে অভিবাদন জানালেন৷ 41 ইলীশাবেত্ যখন মরিয়মের সেই অভিবাদন শুনলেন, তখনই তাঁর গর্ভের সন্তানটি আনন্দে নেচে উঠল; আর ইলীশাবেত্ পবিত্র আত্মাতে পূর্ণ হলেন৷ 42 এরপর তিনি খুব জোরে জোরে বলতে লাগলেন, ‘সমস্ত স্ত্রীলোকের মধ্যে তুমি ধন্যা, আর তোমার গর্ভে য়ে সন্তান আছেন তিনি ধন্য৷ 43 কিন্তু আমার প্রভুর মা য়ে আমার কাছে এসেছেন, এমন সৌভাগ্য আমার কি করে হল? 44 কারণ য়ে মুহূর্তে তোমার কন্ঠস্বর আমি শুনলাম, আমার গর্ভের শিশুটি তখনই নড়ে উঠল৷ 45 আর তুমি ধন্যা, কারণ তুমি বিশ্বাস করেছ য়ে প্রভু তোমায় যা বলেছেন তা পূর্ণ হবে৷’ 46 তখন মরিয়ম বললেন, 47 ‘আমার আত্মা প্রভুর প্রশংসা করছে, আর আমার আত্মা আমার ত্রাণকর্তা ঈশ্বরকে পেয়ে আনন্দিত৷ 48 কারণ তাঁর এই তুচ্ছ দাসীর দিকে তিনি মুখ তুলে চেয়েছেন৷ হ্যাঁ, এখন থেকে সকলেই আমাকে ধন্যা বলবে৷ 49 কারণ সেই একমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার জীবনে কত না মহত্ কাজ করেছেন৷ পবিত্র তাঁর নাম৷ 50 আর যাঁরা বংশানুক্রমে তাঁর উপাসনা করে তিনি তাদের দযা করেন৷ 51 তাঁর বাহুর য়ে পরাক্রম, তা তিনি দেখিয়েছেন৷ যাদের মন অহঙ্কার ও দন্ভপূর্ণ চিন্তায় ভরা, তাদের তিনি ছিন্নভিন্ন করে দেন৷ 52 তিনিই শাসকদের সিংহাসনচ্যুত করেন, যাঁরা নতনম্র তাদের উন্নত করেন৷ 53 ক্ষুধার্তকে তিনি উত্তম দ্রব্য দিয়ে তৃপ্ত করেন; আর বিত্তবানকে নিঃস্ব করে বিদায় করেন৷ 54 তিনি তাঁর দাস ইস্রায়েলকে সাহায্য করতে এসেছেন৷ 55 য়েমন তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তেমনই করবেন৷ অব্রাহাম ও তাঁর বংশের লোকদের চিরকাল দযা করার কথা তিনি মনে রেখেছেন৷’ 56 ইলীশাবেতের ঘরে মরিয়ম প্রায় তিনমাস থাকলেন৷ পরে তিনি তাঁর নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন৷ 57 ইলীশাবেতের প্রসবের সময় হলে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলেন৷ 58 তাঁর প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনেরা যখন শুনল য়ে প্রভু তাঁর প্রতি কি মহা দযা করেছেন, তখন তারা তাঁর আনন্দে আনন্দিত হল৷ 59 শিশুটি যখন আট দিনের, সেইসময় তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে সুন্নত করাতে এলেন৷ সবাই শিশুটির বাবার নাম অনুসারে শিশুর নাম সখরিয় রাখার কথা চিন্তা করছিলেন৷ 60 কিন্তু তার মা বলে উঠলেন, ‘না! ওর নাম হবে য়োহন৷’ 61 তখন তাঁরা ইলীশাবেতকে বললেন, ‘আপনার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে তো কারও ঐ নাম নেই!’ 62 এরপর তারা ইশারা করে ছেলেটির বাবার কাছে জানতে চাইলেন তিনি কি নাম দিতে চান৷ 63 সখরিয় ইশারা করে লেখার ফলক চেয়ে নিলেন ও তাতে লিখলেন, ‘ওর নাম য়োহন৷’ এতে তাঁরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, 64 তখনই সখরিয়র জিভের জড়তা চলে গেল ও মুখ খুলে গেল, আর তিনি ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন৷ 65 আশপাশের সকলে এতে খুব ভয় পেয়ে গেল, যিহূদিযার পার্বত্য অঞ্চলের লোকরা সকলে এবিষয়ে বলাবলি করতে লাগল৷ 66 যাঁরা এসব কথা শুনল তারা সকলেই আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল, ‘ভবিষ্যতে এই ছেলেটি কি হবে?’ কারণ প্রভুর শক্তি এর সঙ্গে আছে৷ 67 পরে ছেলেটির বাবা সখরিয় পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ভাববাণী বলতে লাগলেন: 68 ‘ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্, কারণ তিনি তাঁর নিজের লোকদের সাহায্য করতে ও তাদের মুক্ত করতে এসেছেন৷ 69 আমাদের জন্য তিনি তাঁর দাস দাযূদের বংশে একজন মহাশক্তিসম্পন্ন ত্রাণকর্তাকে দিয়েছেন৷ 70 এ বিষয়ে তাঁর পবিত্র ভাববাদীদেরমাধ্যমে তিনি বহুপূর্বেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ 71 শত্রুদের হাত থেকে ও যাঁরা আমাদের ঘৃণা করে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি৷ 72 তিনি বলেছিলেন, আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি দযা করবেন এবং তিনি সেই প্রতিশ্রুতি স্মরণ করেছেন৷ 73 এ সেই প্রতিশ্রুতি যা তিনি আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহামের কাছে করেছিলেন৷ 74 শত্রুদের হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি য়েন আমরা নির্ভয়ে তাঁর সেবা করতে পারি: 75 আর আমাদের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর দৃষ্টিতে পবিত্র ও ধার্মিক থেকে তাঁর সেবা করে য়েতে পারি৷ 76 এখন হে বালক, তোমাকে বলা হবে পরমেশ্বরের ভাববাদী; কারণ তুমি প্রভুর পথ প্রস্তুত করবার জন্য তাঁর আগে আগে চলবে৷ 77 তুমি তাঁর লোকদের বলবে, ঈশ্বরের দযায় তোমরা পাপের ক্ষমা দ্বারা উদ্ধার পাবে৷ 78 কারণ আমাদের ঈশ্বরের দযা ও করুণার উর্দ্ধ থেকে এক নতুন দিনের ভোরের আলো আমাদের ওপর ঝরে পড়বে৷ 79 যাঁরা অন্ধকার ও মৃত্যুর ছাযায় বসে আছে তাদের ওপর সেই আলো এসে পড়বে; আর তা আমাদের শান্তির পথে পরিচালিত করবে৷’ 80 সেই শিশু য়োহন বড় হয়ে উঠতে লাগলেন, আর দিন দিন আত্মায় শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকলেন৷ ইস্রায়েলীয়দের কাছে প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসার আগে পর্যন্ত তিনি নির্জন স্থানগুলিতে জীবনযাপন করছিলেন৷
1 সেই সময় আগস্ত কৈসর হুকুম জারি করলেন য়ে, রোম সাম্রাজ্যের সব জায়গায় লোক গণনা করা হবে৷ 2 এটাই হল সুরিযার রাজ্যপাল কুরীণিয়ের সময়ে প্রথম আদমশুমারি৷ 3 আর প্রত্যেকে নিজের নিজের শহরে নাম লেখাবার জন্য গেল৷ 4 য়োষেফ ছিলেন রাজা দাযূদের বংশধর, তাই তিনি গালীল প্রদেশের নাসরত্ থেকে রাজা দাযূদের বাসভূমি বৈত্লেহমে গেলেন৷ 5 য়োষেফ তাঁর বাগ্দত্তা স্ত্রী মরিয়মকে সঙ্গে নিয়ে নাম লেখাতে চললেন৷ এই সময় মরিয়ম ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা৷ 6 তাঁরা যখন সেখানে ছিলেন, তখন মরিয়মের প্রসব বেদনা উঠল৷ 7 আর মরিয়ম তাঁর প্রথম সন্তান প্রসব করলেন৷ তিনি সদ্য়োজাত সেই শিশুকে কাপড়ের টুকরো দিয়ে জড়িয়ে একটি জাবনা খাবার পাত্রে শুইয়ে রাখলেন, কারণ ঐ নগরের অতিথিশালায় তাঁদের জন্য জায়গা ছিল না৷ 8 সেখানে গ্রামের বাইরে মেষপালকেরা রাতে মাঠে তাদের মেষপাল পাহারা দিচ্ছিল৷ 9 এমন সময় প্রভুর এক স্বর্গদূত তাদের সামনে উপস্থিত হলে প্রভুর মহিমা চারদিকে উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিল৷ এই দেখে মেষপালকরা খুব ভয় পেয়ে গেল৷ 10 সেই স্বর্গদূত তাদের বললেন, ‘ভয় নেই, দেখ আমি তোমাদের কাছে এক আনন্দের সংবাদ নিয়ে এসেছি৷ এই সংবাদ সকলের জন্য মহা আনন্দের হবে৷ 11 কারণ রাজা দাযূদের নগরে আজ তোমাদের জন্য একজন ত্রাণকর্তার জন্ম হয়েছে৷ তিনি খ্রীষ্ট প্রভু৷ 12 আর তোমাদের জন্য এই চিহ্ন রইল, তোমরা দেখবে একটি শিশুকে কাপড়ে জড়িয়ে একটা জাবনা খাবার পাত্রে শুইয়ে রাখা হয়েছে৷’ 13 সেই সময় হঠাত্ স্বর্গীয় বাহিনীর এক বিরাট দল ঐ স্বর্গদূতদের সঙ্গে য়োগ দিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বললেন, 14 ‘স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমা, পৃথিবীতে তাঁর প্রীতির পাত্র মনুষ্যদের মধ্যে শান্তি৷’ 15 স্বর্গদূতেরা তাদের কাছ থেকে স্বর্গে ফিরে গেলে মেষপালকরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘চল, আমরা বৈত্লেহমে যাই, প্রভু আমাদের য়ে ঘটনার কথা জানালেন সেখানে গিয়ে তা দেখি৷’ 16 তারা সেখানে ছুটে গেলে মরিয়ম, য়োষেফ এবং সেই শিশুটিকে একটি জাবনা খাবার পাত্রে শোযানো দেখল৷ 17 মেষপালকেরা শিশুটিকে দেখতে পেয়ে, সেই শিশুটির বিষয়ে তাদের যা বলা হয়েছিল সেকথা সকলকে জানাল৷ 18 মেষপালকদের মুখে ঐ কথা যাঁরা শুনল তারা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 19 কিন্তু মরিয়ম এই কথা মনের মধ্যে গেঁথে নিয়ে সব সময় এবিষয়ে চিন্তা করতে লাগলেন৷ 20 এরপর মেষপালকরা তাদের কাছে যা বলা হয়েছিল সেই অনুসারে সব কিছু দেখে ও শুনে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে ঘরে ফিরে গেল৷ 21 এর আট দিন পরে সুন্নত করার সময়ে শিশুটির নাম রাখা হল যীশু৷ তাঁর মাতৃগর্ভে আসার আগেই স্বর্গদূত এই নাম রেখেছিলেন৷ 22 মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে শুচিকরণ অনুষ্ঠানের সময় হলে তাঁরা যীশুকে জেরুশালেমে নিয়ে গেলেন, য়েন সেখানে প্রভুর সামনে তাঁকে উত্সর্গ করতে পারেন৷ 23 কারণ প্রভুর বিধি-ব্যবস্থায় লেখা আছে, ‘স্ত্রীলোকের প্রথম সন্তানটি যদি পুত্র হয়, তবে তাকে ‘প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করতে হবে,” 24 আর প্রভুর বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে, ‘এক জোড়া ঘুঘু অথবা দুটি পায়রার বাচ্চা উত্সর্গ করতে হবে৷’৷ সুতরাং য়োষেফ এবং মরিয়ম সেইমত কাজ করবার জন্য জেরুশালেমে গেলেন৷ 25 জেরুশালেমে সেই সময় শিমিযোন নামে একজন ধার্মিক ও ঈশ্বরভক্ত লোক বাস করতেন৷ তিনি ইস্রায়েলের মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন৷ পবিত্র আত্মা তাঁর ওপর অধিষ্ঠান করছিলেন৷ 26 পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁর কাছে একথা প্রকাশ করা হয়েছিল য়ে প্রভু খ্রীষ্টকে না দেখা পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হবে না৷ 27 পবিত্র আত্মার প্রেরণায় তিনি সেদিন মন্দিরে এসেছিলেন৷ যীশুর বাবা-মা মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতে যীশুকে নিয়ে সেখানে এলেন৷ 28 তখন শিমিযোন যীশুকে কোলে তুলে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, 29 ‘হে প্রভু, তোমার প্রতিশ্রুতি অনুসারে তুমি তোমার দাসকে শান্তিতে বিদায় দাও৷ 30 কারণ আমি নিজের চোখে তোমার পরিত্রাণ দেখেছি৷ 31 য়ে পরিত্রাণ তুমি সকল লোকের সাক্ষাতে প্রস্তুত করেছ৷ 32 তিনি অইহুদীদের অন্তর আলোকিত করার জন্য আলো; আর তিনিই তোমার প্রজা ইস্রায়েলের জন্য সম্মান আনবেন৷’ 33 তাঁর বিষয়ে যা বলা হল তা শুনে য়োষেফ ও মরিয়ম আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 34 এরপর শিমিযোন তাঁদের আশীর্বাদ করে যীশুর মা মরিয়মকে বললেন, ‘ইনি হবেন ইস্রায়েলের মধ্যে বহু লোকের পতন ও উত্থানের কারণ৷ ঈশ্বর হতে আগত এমন চিহ্ন যা বহু লোকই অগ্রাহ্য় করবে৷ 35 এতে বহু লোকের হৃদয়ের গোপন চিন্তা প্রকাশ হয়ে পড়বে৷ যা যা ঘটবে তাতে তোমার হৃদয় বিদীর্ণ হবে৷’ 36 সেখানে হান্না নামে একজন ভাববাদিনী ছিলেন৷ তিনি আশের গোষ্ঠীর পনুয়েলের কন্যা৷ তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল৷ বিবাহের পর সাত বছর তিনি স্বামীর ঘর করেন, 37 তারপর চুরাশি বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বৈধব্য জীবনযাপন করেছিলেন৷ মন্দির ছেড়ে তিনি কোথাও য়েতেন না; উপবাস ও প্রার্থনাসহ সেখানে দিন-রাত ঈশ্বরের উপাসনা করতেন৷ 38 ঠিক সেই মুহূর্তে তিনি তাঁদের দিকে এগিয়ে এসে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে আরন্ভ করলেন; আর যাঁরা জেরুশালেমের মুক্তির অপেক্ষায় ছিল তাদের সকলের কাছে সেই শিশুটির বিষয় বলতে লাগলেন৷ 39 প্রভুর বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে যা যা করণীয় তা সম্পূর্ণ করে য়োষেফ ও মরিয়ম তাঁদের নিজেদের নগর নাসরতে ফিরে গেলেন৷ 40 শিশুটি ক্রমে ক্রমে বেড়ে উঠতে লাগলেন ও বলিষ্ঠ হয়ে উঠলেন৷ তিনি জ্ঞানে পূর্ণ হতে থাকলেন, তাঁর ওপরে ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছিল৷ 41 নিস্তারপর্বপালনের জন্য তাঁর মা-বাবা প্রতি বছর জেরুশালেমে য়েতেন৷ 42 যীশুর বয়স যখন বারো বছর, তখন তাঁরা যথারীতি সেই পর্বে য়োগ দিতে গেলেন৷ 43 পর্বের শেষে তাঁরা যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখন বালক যীশু জেরুশালেমেই রয়ে গেলেন, এবিষয়ে তাঁর মা-বাবা কিছুই জানতে পারলেন না৷ 44 তাঁরা মনে করলেন য়ে তিনি দলের সঙ্গেই আছেন৷ তাঁরা এক দিনের পথ চলার পর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে তাঁর খোঁজ করতে লাগলেন৷ 45 কিন্তু তাঁকে না পেয়ে তাঁরা যীশুর খোঁজ করতে করতে আবার জেরুশালেমে ফিরে গেলেন৷ 46 শেষ পর্যন্ত তিন দিন পরে মন্দির চত্বরে তাঁর দেখা পেলেন৷ সেখানে তিনি ধর্ম শিক্ষকদের সাথে বসে তাঁদের কথা শুনছিলেন ও তাঁদের নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিলেন৷ 47 যাঁরা তাঁর কথা শুনছিলেন তাঁরা সকলে যীশুর বুদ্ধি আর প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওযা দেখে অবাক হয়ে গেলেন৷ 48 যীশুর মা-বাবা তাঁকে সেখানে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ তাঁরমা তাঁকেবললেন, ‘বাছা, তুমি আমাদের সঙ্গে কেন এমন করলে? তোমার বাবা ও আমি ভীষণ ব্যাকুল হয়ে তোমার খোঁজ করে বেড়াচ্ছি৷’ 49 যীশু তখন তাঁদের বললেন, ‘তোমরা কেন আমার খোঁজ করছিলে? তোমরা কি জানতে না য়ে য়েখানে আমার পিতার কাজ, সেখানেই আমাকে থাকতে হবে?’ 50 কিন্তু তিনি তাঁদের যা বললেন তার অর্থ তাঁরা বুঝতে পারলেন না৷ 51 এরপর তিনি তাঁদের সঙ্গে নাসরতে ফিরে গেলেন, আর তাঁদের বাধ্য হয়ে রইলেন৷ তাঁর মা এসব কথা মনের মাঝে গেঁথে রাখলেন৷ 52 এইভাবে যীশু বয়সে ও জ্ঞানে বড় হয়ে উঠলেন, আর ঈশ্বর ও মানুষের ভালবাসা লাভ করলেন৷
1 তিবিরিয় কৈসরের রাজত্বের পনের বছরের মাথায় যিহূদিযার রাজ্যপাল ছিলেন পন্তীয় পীলাত৷ সেই সময় হেরোদ ছিলেন গালীলের শাসনকর্তা এবং তাঁর ভাই ফিলিপ ছিলেন যিতুরিযা ও ত্রাখোনীতি যার শাসনকর্তা, লুষাণিয় ছিলেন অবিলীনীর শাসনকর্তা৷ 2 হামন ও কায়াফা ছিলেন ইহুদীদের মহাযাজক৷ সেই সময় প্রান্তরের মধ্যে সখরিয়র পুত্র য়োহনের কাছে ঈশ্বরের আদেশ এল৷ 3 আর তিনি যর্দনের চারপাশে সমস্ত জায়গায় গিয়ে প্রচার করতে লাগলেন য়েন লোকে পাপের ক্ষমা লাভের জন্য মন ফেরায় ও বাপ্তিস্ম নেয়৷ 4 ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তকে য়েমন লেখা আছে:‘প্রান্তরের মধ্যে একজনের কন্ঠস্বর ডেকে ডেকে বলছে, ‘প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত কর৷ তার জন্য চলার পথ সোজা কর৷ 5 সমস্ত উপত্যকা ভরাট কর, প্রতিটি পর্বত ও উপপর্বত সমান করতে হবে৷ আঁকা-বাঁকা পথ সোজা করতে হবে এবং এবড়ো-খেবড়ো পথ সমান করতে হবে৷ 6 তাতে সকল লোকে ঈশ্বরের পরিত্রাণ দেখতে পাবে৷”যিশাইয় 40:3-5 7 তখন বাপ্তিস্ম নেবার জন্য অনেক লোক য়োহনের কাছে আসতে লাগল৷ তিনি তাদের বললেন, ‘হে সাপের বংশধরেরা! ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে ক্রোধ নেমে আসছে তা থেকে বাঁচার জন্য কে তোমাদের সতর্ক করে দিল? 8 তোমরা য়ে মন ফিরিয়েছ তার ফল দেখাও৷ একথা বলতে শুরু করো না, য়ে ‘আরে অব্রাহাম তো আমাদের পিতৃপুরুষ’ কারণ আমি তোমাদের বলছি এই পাথরগুলো থেকে ঈশ্বর অব্রাহামের জন্য সন্তান উত্পন্ন করতে পারেন৷ 9 গাছের গোড়াতে কুড়ুল লাগানোই আছে, য়ে গাছ ভাল ফল দিচ্ছে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওযা হবে৷’ 10 তখন লোকরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘তাহলে আমাদের কি করতে হবে?’ 11 এর উত্তরে তিনি তাদের বললেন, ‘যদি কারো দুটো জামা থাকে, তবে যার নেই তাকে য়েন তার থেকে একটি জামা দেয়; আর যার খাবার আছে, সেও অন্য়ের সঙ্গে সেইরকম য়েন ভাগ করে নেয়৷’ 12 কয়েকজন কর আদায়কারীও বাপ্তাইজহবার জন্য এল৷ তারা তাঁকে বলল, ‘গুরু, আমরা কি করব?’ 13 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘যতটা কর আদায় করার কথা তার চেয়ে বেশী আদায় কোরো না৷’ 14 কয়েকজন সৈনিকও তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমাদের কি হবে? আমরা কি করব? তিনি তাদের বললেন, ‘কারো কাছ থেকে জোর করে কোন অর্থ নিও না৷ কারো প্রতি মিথ্যা দোষারোপ করো না৷ তোমাদের যা বেতন তাতেই সন্তুষ্ট থেকো৷’ 15 লোকরা মনে মনে আশা করেছিল, ‘য়ে য়োহনই হয়তো তাদের সেই প্রত্যাশিত খ্রীষ্ট৷’ 16 তাদের এই রকম চিন্তার জবাবে য়োহন বললেন, ‘আমি তোমাদের জলে বাপ্তাইজ করি, কিন্তু আমার থেকে আরো শক্তিশালী একজন আসছেন, আমি তাঁর জুতোর ফিতে খোলবার য়োগ্য নই৷ তিনিই তোমাদের পবিত্র আত্মায় ও আগুনে বাপ্তাইজ করবেন৷ 17 কুলোর বাতাস দিয়ে খামার পরিষ্কার করার জন্য কুলো তাঁর হাতেই আছে, তা দিয়ে তিনি সব শস্য জড়ো করে তাঁর গোলায় তুলবেন আর অনির্বাণ আগুনে তূষ পুড়িয়ে দেবেন৷’ 18 আরো বিভিন্ন উপদেশের মাধ্যমে লোকদের উত্সাহিত করে য়োহন তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করবেন৷ 19 শাসনকর্তা হেরোদ তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী হেরোদিযাকে বিয়ে করেছিলেন, এরজন্য এবং এছাড়াও তাঁর আরো অনেক অন্যায় কাজের জন্য য়োহন হেরোদকে তিরস্কার করলেন৷ 20 তাতে হেরোদ য়োহনকে বন্দী করে কারাগারে পাঠালেন আর এইভাবে তিনি তাঁর অন্য সব দুষ্কর্মের সঙ্গে এইটিও য়োগ করলেন৷ 21 লোকেরা যখন বাপ্তিস্ম নিচ্ছিল সেই সময় একদিন যীশুও বাপ্তিস্ম নিলেন৷ বাপ্তিস্মের পর যীশু যখন প্রার্থনা করছিলেন, তখন স্বর্গ খুলে গেল, 22 আর স্বর্গ থেকে পবিত্র আত্মা কপোতের মতো তাঁর ওপর নেমে এলেন৷ তখন স্বর্গ থেকে এই রব শোনা গেল, ‘তুমি আমার প্রিয় পুত্র, তোমার ওপর আমি খুবই সন্তষ্ট৷’ 23 প্রায় ত্রিশ বছর বয়সে যীশু তাঁর কাজ শুরু করেন৷ লোকেরা মনে করত তিনি য়োষেফেরই ছেলে৷য়োষেফ হলেন এলির ছেলে৷ 24 এলি মত্ততের ছেলে৷ মত্তত্ লেবির ছেলে৷ লেবি মল্কির ছেলে৷ মল্কি যান্নায়ের ছেলে৷ যান্না য়োষেফের ছেলে৷ 25 য়োষেফ মত্তথিয়ের ছেলে৷ মত্তথিয় আমোসের ছেলে৷ আমোস নহূমের ছেলে৷ নহূম ইষলির ছেলে৷ ইষ্লি নগির ছেলে৷ 26 নগি মাটের ছেলে৷ মাট মত্তথিয়ের ছেলে৷ মত্তথিয় শিমিযির ছেলে৷ শিমিযি য়োষেখের ছেলে৷ য়োষেখ য়ূদার ছেলে৷ 27 য়ূদা য়োহানার ছেলে৷ য়োহানা রীষার ছেলে৷ রীষা সরুব্বাবিলের ছেলে৷ সরুব্বাবিল শল্টীয়েলের ছেলে৷ শল্টীয়েল নেরির ছেলে৷ 28 নেরি মল্কির ছেলে৷ মল্কি অদ্দীর ছেলে৷ অদ্দী কোষমের ছেলে৷ কোষম ইল্মাদমের ছেলে৷ ইল্মাদম এরের ছেলে৷ 29 এর যিহোশূর ছেলে৷ যিহোশূ ইলীয়েষরের ছেলে৷ ইলীয়েষর য়োরীমের ছেলে৷ য়োরীম মত্ততের ছেলে৷ মত্তত লেবির ছেলে৷ 30 লেবি শিমিযোনের ছেলে৷ শিমিযোন য়ূদার ছেলে৷ য়ূদা য়োষেফের ছেলে৷ য়োষেফ য়োনমের ছেলে৷ য়োনম ইলিযাকীমের ছেলে৷ 31 ইলিযাকীম মিলেযার ছেলে৷ মিলেযা মিন্নার ছেলে৷ মিন্না মত্তথের ছেলে৷ মত্তথ নাথনের ছেলে৷ নাথন দাযূদের ছেলে৷ 32 দাযূদ যিশয়ের ছেলে৷ যিশয় ওবেদের ছেলে৷ ওবেদ বোয়সের ছেলে৷ বোয়স সলমোনের ছেলে৷ সলমোন নহশোনের ছেলে৷ 33 নহশোন অম্মীনাদবের ছেলে৷ অম্মীনাদব অদমানের ছেলে৷ অদমান অর্ণির ছেলে৷ অর্ণি হিষ্রোণের ছেলে৷ হিষ্রোণ পেরসের ছেলে৷ পেরস যিহূদার ছেলে৷ 34 যিহূদা যাকোবের ছেলে৷ যাকোব ইসহাকের ছেলে৷ ইসহাক অব্রাহামের ছেলে৷ অব্রাহাম তেরূহের ছেলে৷ তেরূহ নাহোরের ছেলে৷ 35 নাহোর সরূগের ছেলে৷ সরূগ রিযুর ছেলে৷ রিযু পেলগের ছেলে৷ পেলগ এবরের ছেলে৷ এবর শেলহের ছেলে৷ 36 শেলহ কৈননের ছেলে৷ কৈনন অর্ফক্ষদের ছেলে৷ অর্ফক্ষদ শেমের ছেলে৷ শেম নোহের ছেলে৷ নোহ লেমকের ছেলে৷ 37 লেমক মথূশেলহের ছেলে৷ মথূশেলহ হনোকের ছেলে৷ হনোক য়েরদের ছেলে৷ য়েরদ মহললেলের ছেলে৷ মহললেল কৈননের ছেলে৷ 38 কৈনন ইনোশের ছেলে৷ ইনোশ শেথের ছেলে৷ শেথ আদমের ছেলে৷ আদম ঈশ্বরের ছেলে৷
1 এরপর যীশু পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে যর্দন নদী থেকে ফিরে এলেন: আর আত্মার পরিচালনায় প্রান্তরের মধ্যে গেলেন৷ 2 সেখানে চল্লিশ দিন ধরে দিযাবল তাঁকে প্রলোভনে ফেলতে চাইল৷ সেই সময় তিনি কিছুই খাদ্য গ্রহণ করেন নি৷ ঐ সময় পার হয়ে গেলে যীশুর খিদে পেল৷ 3 তখন দিযাবল তাঁকে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এই পাথরটিকে রুটি হয়ে য়েতে বল৷’ 4 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘মানুষ কেবল রুটিতেই বাঁচে না৷” দ্বিতীয় বিবরণ 8:3 5 এরপর দিযাবল তাঁকে একটা উঁচু জায়গায় নিয়ে গেল আর মুহূর্তের মধ্যে জগতের সমস্ত রাজ্য দেখাল৷ 6 দিযাবল যীশুকে বলল, ‘এই সব রাজ্যের পরাক্রম ও মহিমা আমি তোমায় দেব, কারণ এই সমস্তই আমাকে দেওযা হয়েছে, আর আমি যাকে চাই তাকেই এসব দিতে পারি৷ 7 এখন তুমি যদি আমার উপাসনা কর তবে এসবই তোমার হবে৷’ 8 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘শাস্ত্রে লেখা আছে:‘তুমি কেবল তোমার প্রভু ঈশ্বরকেই উপাসনা করবে, কেবল তাঁরই সেবা করবে!’দ্বিতীয় বিবরণ 6:13 9 এরপর দিযাবল তাঁকে জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে মন্দিরের চূড়ার ওপরে দাঁড় করিয়ে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এখান থেকে লাফ দিয়ে নীচে পড়৷ 10 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:‘ঈশ্বর তাঁর স্বর্গদূতদের তোমার বিষয়ে আদেশ দেবেন য়েন তারা তোমাকে রক্ষা করে৷’ গীতসংহিতা 91:11 11 আরো লেখা আছে:‘তারা তোমাকে তাদের হাতে করে তুলে ধরবে য়েন তোমার পায়ে পাথরের আঘাত না লাগে৷” গীতসংহিতা 91:12 12 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘শাস্ত্রে একথাও বলা হয়েছে:‘তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের পরীক্ষা করো না৷” দ্বিতীয় বিবরণ 6:16 13 এইভাবে দিযাবল তাঁকে সমস্ত রকমের প্রলোভনে ফেলার চেষ্টা করে, আরো ভাল সুয়োগের অপেক্ষায় যীশুকে ছেড়ে চলে গেল৷ 14 যীশু পবিত্র আত্মার পরিচালনায় গালীলে ফিরে গেলে ঐ সংবাদ সেই অঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল৷ 15 তিনি তাদের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে লাগলেন, আর সবাই তাঁর প্রশংসা করতে লাগল৷ 16 এরপর যীশু নাসরতে গেলেন, এখানেই তিনি প্রতিপালিত হয়েছিলেন৷ তাঁর রীতি অনুসারে বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহেগিয়ে সেখানে শাস্ত্র পাঠ করার জন্য উঠে দাঁড়ালেন৷ 17 তাঁর হাতে ভাববাদী যিশাইয়র লেখা পুস্তকটি দেওযা হল৷ তিনি পুস্তকটি খুলে সেই অংশটি পেলেন, য়েখানে লেখা আছে: 18 ‘প্রভুর আত্মা আমার ওপর আছেন কারণ দীন দরিদ্রের কাছে সুসমাচার প্রচারের জন্য তিনিই আমায় নিযুক্ত করেছেন৷ তিনি আমাকে বন্দীদের কাছে স্বাধীনতার কথা ও অন্ধদের কাছে দৃষ্টি ফিরে পাবার কথা ঘোষণা করতে পাঠিয়েছেন; আর নির্যাতিতদের মুক্ত করতে বলেছেন৷ 19 এছাড়া প্রভুর অনুগ্রহ দানের বত্সরের কথা ঘোষণা করতেও পাঠিয়েছেন৷ যিশাইয় 61:1-2 20 এরপর তিনি পুস্তকটি গুটিয়ে সেখানকার সহায়কদের হাতে দিয়ে বসলেন৷ সমাজ-গৃহে যাঁরা সে সময় ছিল, তাদের সকলের দৃষ্টি তাঁর ওপর গিয়ে পড়ল৷ 21 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘শাস্ত্রের এই কথা যা তোমরা শুনলে তা আজ পূর্ণ হল৷’ 22 সকলেই তাঁর খুব প্রশংসা করল, তাঁর মুখে অপূর্ব সব কথা শুনে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তারা বলল, ‘এ কি য়োষেফের ছেলে নয়?’ 23 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা নিশ্চয়ই আমার বিষয়ে প্রচলিত প্রবাদটি বলবে, ‘চিকিত্সক, আগে নিজেকে সুস্থ কর৷’ কফরনাহূমে য়ে সমস্ত কাজ করেছ বলে আমরা শুনেছি সে সব এখন এখানে নিজের গ্রামেও কর দেখি!” 24 তারপর যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কোন ভাববাদী তাঁর নিজের গ্রামে গ্রাহ্য হন না৷ 25 সত্যি বলতে কি এলীয়র সময়ে যখন সাড়ে তিন বছর ধরে আকাশ রুদ্ধ ছিল এবং সারা দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ চলছিল, সেই সময ইস্রায়েল দেশে অনেক বিধবা ছিল৷ 26 কিন্তু তাদের কারো কাছে এলীয়কে পাঠানো হয় নি, কেবল সীদোন প্রদেশে সারিফতে সেই বিধবার কাছেই তাঁকে পাঠানো হয়েছিল৷ 27 আবার ভাববাদী ইলীশায়ের সময়ে ইস্রায়েল দেশে অনেক কুষ্ঠরোগী ছিল, কিন্তু তাদের কেউ সুস্থ হয় নি, কেবল সুরীয় নামান সুস্থ হয়েছিল৷’ 28 এই কথা শুনে সমাজ-গৃহের সমস্ত লোক রেগে আগুন হয়ে গেল৷ 29 তারা উঠে যীশুকে নগরের বাইরে বের করে দিল আর নগরটি য়ে পাহাড়ের ওপর ছিল তার শেষ প্রান্তে তাঁকে ঠেলে নিয়ে গেল, য়েন পাহাড়ের চূড়া থেকে তাঁকে নীচে ফেলে দিতে পারে৷ 30 কিন্তু তিনি তাদের মাঝখান দিয়ে চলে গেলেন৷ 31 এরপর যীশু গালীলের কফরনাহূম শহরে গেলেন৷ সেখানে তিনি বিশ্রামবারে তাদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন৷ 32 তাঁর দেওযা শিক্ষায় তারা আশ্চর্য হয়ে গেল, কারণ তাঁর শিক্ষা ছিল ক্ষমতাযুক্ত৷ 33 সেই সমাজগৃহে অশুচি আত্মায় পাওযা একজন লোক ছিল, সে চিত্কার করে বলে উঠল, 34 ‘ওহে নাসরতীয় যীশু! আমাদের কাছে আপনার কি দরকার? আপনি কি আমাদের ধ্বংস করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে, আপনি ঈশ্বরের পবিত্র ব্যক্তি!’ 35 যীশু তাকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘চুপ করো! আর ওর মধ্য থেকে বের হয়ে যাও!’ তখন সেই অশুচি আত্মা লোকটিকে সকলের মাঝখানে আছড়ে ফেলে দিয়ে তার কোন ক্ষতি না করে তার মধ্যে থেকে বের হয়ে গেল৷ 36 এই দেখে লোকেরা অবাক হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, ‘এর মানে কি? সম্পূর্ণ ক্ষমতা ও কর্ত্তৃত্বের সঙ্গে তিনি অশুচি আত্মাদের হুকুম করেন আর তারা বের হয়ে যায়৷’ 37 তাঁর বিষয়ে এই কথা সেই অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল৷ 38 যীশু সমাজ-গৃহ থেকে বেরিয়ে শিমোনের বাড়িতে গেলেন৷ সেখানে শিমোনের শাশুড়ী খুব জ্বরে ভুগছিলেন, তাই তারা এসে তাঁকে অনুরোধ করল য়েন তিনি তাঁকে সুস্থ করেন৷ 39 তখন যীশু তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে জ্বরকে ধমক দিলেন, এর ফলে জ্বর ছেড়ে গেল, আর তিনি তখনই উঠে তাদের খাওযা দাওযার ব্যবস্থা করতে লাগলেন৷ 40 সূর্য় অস্ত যাবার সময় লোকরা তাদের বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের লোকজন, যাঁরা নানা রোগে অসুস্থ ছিল তাদের যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ যীশু তাদের প্রত্যেকের ওপরে হাত রেখে তাদের সুস্থ করলেন৷ 41 তাদের অনেকের মধ্যে থেকে ভূত বের হয়ে এল৷ তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘আপনি ঈশ্বরের পুত্র৷’ কিন্তু তিনি তাদের ধমক দিলেন, তাদের কথা বলতে দিলেন না, কারণ তারা জানত য়ে তিনিই সেই খ্রীষ্ট৷ 42 ভোর হলে যীশু সেই জায়গা ছেড়ে এক নির্জন জায়গায় চলে গেলেন৷ কিন্তু বিরাট জনতা তাঁর খোঁজ করতে লাগল; আর তিনি য়েখানে ছিলেন সেখানে এসে হাজির হল এবং তিনি য়েন তাদের কাছ থেকে চলে না যান সেজন্য তাঁকে আটকাতে চেষ্টা করল৷ 43 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্যের এই সুসমাচার আমাকে অন্যান্য শহরেও বলতে হবে, কারণ এরই জন্য আমাকে পাঠানো হয়েছে৷’ 44 এরপর তিনি যিহূদিযার বিভিন্ন সমাজ-গৃহে প্রচার করতে লাগলেন৷.
1 একদিন যীশু গিনেষরত হ্রদের ধারে দাঁড়িয়েছিলেন৷ বহুলোক তাঁর চারপাশে ভীড় করে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের শিক্ষা শুনছিল৷ 2 তিনি দেখলেন, হ্রদের ধারে দুটি নৌকা দাঁড়িয়ে আছে আর জেলেরা নৌকা থেকে নেমে জাল ধুচ্ছে৷ 3 তিনি একটি নৌকায় উঠলেন, সেই নৌকাটি ছিল শিমোনের৷ যীশু তাঁকে তীর থেকে নৌকাটিকে একটু দূরে নিয়ে য়েতে বললেন৷ তারপর তিনি নৌকায় বসে সেখান থেকে লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ 4 তাঁর কথা শেষ হলে তিনি শিমোনকে বললেন, ‘এখন গভীর জলে নৌকা নিয়ে চল, আর সেখানে মাছ ধরার জন্য তোমাদের জাল ফেল৷’ 5 শিমোন উত্তর দিলেন, ‘প্রভু, আমরা সারা রাত ধরে কঠোর পরিশ্রম করে কিছুই ধরতে পারি নি; কিন্তু আপনি যখন বলছেন তখন আমি জাল ফেলব৷’ 6 তাঁরা জাল ফেললে প্রচুর মাছ জালে ধরা পড়ল৷ মাছের ভারে তাদের জাল ছিঁড়ে যাবার উপক্রম হল৷ 7 তখন তাঁরা সাহায্যের জন্য ইশারা করে অন্য নৌকার সঙ্গীদের ডাকলেন৷ সঙ্গীরা এসে দুটো নৌকায় এত মাছ বোঝাই করলেন য়ে সেগুলো ডুবে যাবার উপক্রম হল৷ 8 এই দেখে পিতর যীশুর পায়ে পড়ে বললেন, ‘প্রভু আমি একজন পাপী৷ আপনি আমার কাছ থেকে চলে যান৷’ কারণ জালে এত মাছ ধরা পড়েছে দেখে তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা সকলে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন৷ 9 10 সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও য়োহন যাঁরা তাঁর ভাগীদার ছিলেন তাঁরাও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন৷ তখন যীশু শিমোনকে বললেন, ‘ভয় পেও না, এখন থেকে তুমি মাছ নয় বরং মানুষ ধরবে৷’ 11 এরপর তাঁরা নৌকাগুলো তীরে এনে সব কিছু ফেলে রেখে যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 12 একবার যীশু কোন এক নগরে ছিলেন, সেখানে একজন লোক যার সর্বাঙ্গ কুষ্ঠরোগে ভরে গিয়েছিল, সে যীশুকে দেখে তাঁর সামনে উপুড় হয়ে পড়ে মিনতি করে বলল, ‘প্রভু, আপনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলেই আমাকে ভালো করতে পারেন৷’ 13 তখন যীশু হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁয়ে বললেন, ‘আমি তা-ই চাই৷ তুমি আরোগ্য লাভ কর!’ আর সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ ভালো হয়ে গেল৷ 14 তখন যীশু তাকে আদেশ করলেন, ‘দেখ, একথা কাউকে বোলো না; কিন্তু যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও, আর শুচি হবার জন্য মোশির নির্দেশ মতো বলি উত্সর্গ কর৷ তুমি য়ে আরোগ্য লাভ করেছ, সবার সামনে এইভাবে তা প্রকাশ কর৷’ 15 যীশুর বিষয়ে নানা খবর চতুর্দিকে আরো ছড়িয়ে পড়তে লাগল, আর বহুলোক ভীড় করে তাঁর কথা শুনতে ও রোগ থেকে সুস্থ হবার জন্য তাঁর কাছে আসতে লাগল৷ 16 কিন্তু যীশু প্রায়ই নির্জন জায়গায় প্রান্তরের মধ্যে গিয়ে প্রার্থনা করতেন৷ 17 একদিন তিনি যখন শিক্ষা দিচ্ছেন তখন সেখানে কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক বসেছিল৷ এরা গালীল ও যিহূদিযার প্রতিটি নগর ও জেরুশালেম থেকে এসেছিল৷ রোগীদের সুস্থ করার জন্য প্রভুর শক্তি যীশুর মধ্যে ছিল৷ 18 সেই সময় কয়েকজন লোক খাটে করে একজন পঙ্গুকে বয়ে নিয়ে এল৷ তারা তাকে ভেতরে যীশুর কাছে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল; 19 কিন্তু ভীড়ের জন্য ভেতরে যাবার পথ পেল না৷ তখন তারা ছাদে উঠে ছাদের টালি সরিয়ে তাকে তার খাটিযা সমেত লোকদের মাঝে য়েখানে যীশু ছিলেন সেখানে নামিয়ে দিল৷ 20 তাদের এই বিশ্বাস দেখে যীশু বললেন, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল৷’ 21 এই শুনে ইহুদী ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা নিজেদের মধ্যে মনে মনে ভাবতে লাগল, ‘এই লোকটা কে য়ে ঈশ্বর নিন্দা করছে! একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে?’ 22 কিন্তু যীশু তাদের মনের চিন্তা বুঝতে পেরে বললেন, ‘তোমরা মনে মনে কেন ঐ কথা ভাবছ? 23 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল,’ না ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও?’ 24 কিন্তু তোমরা য়েন জানতে পারো য়ে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা মানবপুত্রেরআছে৷’ তাই তিনি পঙ্গু লোকটিকে বললেন, ‘আমি তোমায় বলছি, ওঠো! তোমার খাটিযা তুলে নিয়ে বাড়ি যাও৷’ 25 আর লোকটি সঙ্গে সঙ্গে তাদের সামনে উঠে দাঁড়াল আর য়ে খাটিযার ওপর সে শুয়েছিল তা তুলে নিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বাড়ি চলে গেল৷ 26 এই দেখে সবাই খুব আশ্চর্য হয়ে গেল, আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ তারা ভয় ও ভক্তিতে পূর্ণ হয়ে বলতে লাগল, ‘আজ আমরা এক বিস্ময়কর ঘটনা দেখলাম৷’ 27 এই ঘটনার পর যীশু সেখান থেকে বাইরে গেলে কর আদায় করার জায়গায় লেবি নামে একজন কর আদায়কারীকে বসে থাকতে দেখলেন৷ যীশু তাকে বললেন, ‘আমার সঙ্গে এস!’ 28 আর লেবি সব কিছু ফেলে রেখে উঠে পড়লেন ও যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 29 যীশুর জন্য লেবি তাঁর বাড়িতে একটা বড় ভোজের আযোজন করলেন৷ তাদের সঙ্গে অনেক কর আদায়কারী ও অন্যান্য আরো অনেকে খেতে বসল৷ 30 তখন ফরীশী ও তাদের ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুর অনুগামীদের কাছে অভিযোগ করে বলল, ‘তোমরা কেন কর আদায়কারী ও মন্দ লোকদের সঙ্গে ভোজন পান কর?’ 31 এর জবাবে যীশু তাদের বললেন, ‘সুস্থ লোকেদের জন্য চিকিত্সকের প্রযোজন নেই; কিন্তু যাঁরা অসুস্থ তাদের জন্য চিকিত্সকের দরকার আছে৷ 32 আমি ধার্মিকদের নয় কিন্তু মন্দ লোকদের ডাকতে এসেছি; য়েন তারা পাপের পথ থেকে ফেরে৷’ 33 তারা যীশুকে বলল, ‘য়োহনের অনুগামীরা প্রায়ই প্রার্থনা ও উপবাস করে, ফরীশীদের অনুগামীরাও তা করে; কিন্তু আপনার অনুগামীরা তো সব সময়ই ভোজন পান করছে৷’ 34 যীশু তাদের বললেন, ‘বর সঙ্গে থাকতে কি তোমরা বর যাত্রীদের উপোস করে থাকতে বলতে পার? 35 কিন্তু এমন সময় আসছে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে সরিয়ে নেওযা হবে আর সেই সময় তারা উপোস করবে৷’ 36 তিনি তাদের কাছে একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে বললেন, ‘নতুন জামা থেকে একটি টুকরো ছিঁড়ে নিয়ে কেউ কি পুরানো জামায় তালি দেয়? যদি কেউ তা করে তবে সে তার নতুন জামাটি ছিঁড়ল, আবার সেই ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো পুরানোর সঙ্গে মানাবে না৷ 37 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ টাটকা দ্রাক্ষারস রাখে না, রাখলে টাটকা দ্রাক্ষারস চামড়ার থলিটি ফাটিয়ে দেবে তাতে রস ও পড়ে যাবে আর থলি ও নষ্ট হবে৷ 38 টাটকা দ্রাক্ষারস নতুন চামড়ার থলিতে রাখাই উচিত; 39 আর পুরানো দ্রাক্ষারস পান করার পর কেউ টাটকা দ্রাক্ষারস পান করতে চায় না, কারণ সে বলে ‘পুরাতনটাই ভাল৷”
1 কোন এক বিশ্রামবারে যীশু একটি শস্য ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন৷ তাঁর শিষ্যরা শীষ ছিঁড়ে হাতে মেড়ে মেড়ে খাচ্ছিলেন৷ 2 এই দেখে কয়েকজন ফরীশী বলল, ‘য়ে কাজ করা বিশ্রামবারে বিধি-সম্মত নয় তা তোমরা করছ কেন?’ 3 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘দাযূদ ও তাঁর সঙ্গীদের যখন খিদে পেয়েছিল তখন তাঁরা কি করেছিলেন তা কি তোমরা পড় নি? 4 তিনি তো ঈশ্বরের গৃহে ঢুকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিবেদিত রুটি নিয়ে খেয়েছিলেন, আর তাঁর সঙ্গীদের তা দিয়েছিলেন, যা যাজক ছাড়া অন্য কারো খাওযা বিধি-সম্মত ছিল না৷’ 5 যীশু তাদের আরও বললেন, ‘মানবপুত্রই বিশ্রামবারের প্রভু৷’ 6 আর এক বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ সেখানে একজন লোক ছিল যার ডান হাতটি শুকিয়ে গিয়েছিল৷ 7 তিনি তাকে বিশ্রামবারে সুস্থ করেন কি না দেখার জন্য ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা তাঁর ওপর নজর রাখছিল, য়েন তারা যীশুর বিরুদ্ধে দোষ দেবার কোন সূত্র খুঁজে পায়৷ 8 যীশু তাদের মনের চিন্তা জানতেন, তাই য়ে লোকটির হাত শুকিয়ে গিয়েছিল তাকে বললেন, ‘তুমি সকলের সামনে উঠে দাঁড়াও!’ তখন সেই লোকটি সকলের সামনে উঠে দাঁড়াল৷ 9 যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করি, বিশ্রামবারে কি করা বিধিসম্মত, ভাল করা না ক্ষতি করা? কাউকে প্রাণে বাঁচানো না ধ্বংস করা?’ 10 চারপাশে তাদের সকলের দিকে তাকিয়ে তিনি লোকটিকে বললেন, ‘তোমার হাতখানা বাড়াও৷’ সে তাই করলে তার হাত সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে গেল৷ 11 কিন্তু ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা রাগে জ্বলতে লাগল৷ তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগল, ‘যীশুর প্রতি কি করা হবে?’ 12 যীশু সেই সময় একবার প্রার্থনা করার জন্য একটি পর্বতে গেলেন৷ সারা রাত ধরে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনায় কাটালেন৷ 13 সকাল হলে তিনি তাঁর অনুগামীদেব নিজের কাছে ডাকলেন ও তাঁদের মধ্য থেকে বারোজনকে মনোনীত করে তাঁদের ‘প্রেরিত’ পদে নিযোগ করলেন৷ তাঁরা হলেন, 14 শিমোন যার নাম রাখলেন তিনি পিতর আর তাঁর ভাই আন্দরিয়, যাকোব ও য়োহন আর ফিলিপ ও বর্থলময়, 15 মথি, থোমা, আলফেয়ের ছেলে যাকোব, শিমোন য়ে ছিল দেশ ভক্ত দলের লোক৷ 16 যাকোবের ছেলে যিহূদা আর যিহূদা ঈষ্করিযোতীয়, য়ে পরে বিশ্বাসঘাতকে পরিণত হয়েছিল৷ 17 যীশু তাঁর প্রেরিতদেরসঙ্গে নিয়ে পর্বত থেকে নেমে একটা সমতল জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন৷ সেখানে তাঁর আরো অনুগামী এসে জড়ো হয়েছিল৷ সমস্ত যিহূদা জেরুশালেম এবং সোর সীদোনের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে বিস্তর লোক তাঁর কাছে এসে জড় হল৷ 18 তাঁরা তার কথা শুনতে ও তাদের রোগ-ব্যধি থেকে সুস্থ হতে তাঁর কাছে এসেছিল৷ যাঁরা মন্দ আত্মার প্রকোপে কষ্ট পাচ্ছিল তারাও সুস্থ হল৷ 19 সকলেই তাঁকে স্পর্শ করার চেষ্টা করতে লাগল, কারণ তাঁর মধ্য থেকে শক্তি বের হয়ে তাদের আরোগ্য দান করছিল৷ 20 যীশু তাঁর অনুগামীদের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,‘দরিদ্রেরা তোমরা ধন্য, কারণ ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদেরই৷ 21 তোমরা এখন যাঁরা ক্ষুধিত, তারা ধন্য কারণ তোমরা পরিতৃপ্ত হবে৷ তোমরা এখন যাঁরা চোখের জল ফেলছ, তারা ধন্য, কারণ তোমরা আনন্দ করবে৷ 22 ‘ধন্য তোমরা যখন মানবপুত্রের লোক বলে অন্য়েরা তোমাদের ঘৃণা করে, সমাজচ্যুত করে, অপমান করে, তোমাদের নাম মুখে আনতে চায় না এবং তোমাদেরকে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না৷ 23 সেই দিন তোমরা আনন্দ করো, আনন্দে নৃত্য করো কারণ দেখ স্বর্গে তোমাদের জন্য পুরস্কার সঞ্চিত আছে৷ ওদের পূর্বপুরুষেরা ভাববাদীদের সঙ্গে এই রকমই ব্যবহার করেছে৷ 24 কিন্তু ধনী ব্যক্তিরা, ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা তো এখনই দুঃখ পাচ্ছ৷ 25 তোমরা যাঁরা আজ পরিতৃপ্ত, ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা ক্ষুধার্ত হবে৷ তোমরা যাঁরা আজ হাসছ, ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা কাঁদবে, শোক করবে৷ 26 ধিক্ তোমাদের, যখন সব লোক তোমাদের প্রশংসা করে, কারণ এই সব লোকদের পূর্বপুরুষেরা ভণ্ড ভাববাদীদেরও প্রশংসা করত৷ 27 ‘তোমরা যাঁরা শুনছ, আমি কিন্তু তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালবেসো৷ যাঁরা তোমাদের ঘৃণা করে, তাদের মঙ্গল কোর৷ 28 যাঁরা তোমাদের অভিশাপ দেয়, তাদের আশীর্বাদ কোর৷ যাঁরা তোমাদের সঙ্গে দুর্য়্ববহার করে, তাদের জন্য প্রার্থনা কোর৷ 29 কেউ যদি তোমার একগালে চড় মারে, তার কাছে অপর গালটি বাড়িয়ে দাও৷ কেউ যদি তোমার চাদর কেড়ে নেয়, তাকে তোমার জামাটিও নিতে দাও৷ 30 তোমার কাছে য়ে চায় তাকে দাও৷ আর তোমার কোন জিনিস যদি কেউ নেয়, তবে তা ফেরত চেও না৷ 31 অন্যের কাছ থেকে তুমি য়েমন ব্যবহার পেতে চাও, তাদের সঙ্গেও তুমি তেমনি ব্যবহার কোর৷ 32 যাঁরা তোমাদের ভালবাসে, তোমরা যদি কেবল তাদেরই ভালবাস, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? কারণ পাপীরাও তো একই রকম করে৷ 33 যাঁরা তোমাদের উপকার করে, তোমরা যদি কেবল তাদেরই উপকার কর, তাতে প্রশংসার কি আছে? পাপীরাও তো তাই করে৷ 34 যাঁরা ধার শোধ করতে পারে এমন লোকদেরই যদি কেবল তোমরা ধার দাও, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? এমন কি পাপীরাও তা ফিরে পাবার আশায় তাদের মতো পাপীদের ধার দেয়৷ 35 কিন্তু তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালবেসো, তাদের মঙ্গল কোর, আর কিছুই ফিরে পাবার আশা না রেখে ধার দিও৷ তাহলে তোমাদের মহাপুরস্কার লাভ হবে, আর তোমরা হবে পরমেশ্বরের সন্তান, কারণ তিনি অকৃতজ্ঞ ও দুষ্টদের প্রতিও দযা করেন৷ 36 তোমাদের পিতা, য়েমন দযালু তোমরাও তেমন দযালু হও৷ 37 অপরের বিচার কোর না, তাহলে তোমাদেরও বিচারের সম্মুখীন হতে হবে না৷ অপরের দোষ ধরো না, তাহলে তোমাদেরও দোষ ধরা হবে না৷ অন্যকে ক্ষমা কোর, তাহলে তোমাদেরও ক্ষমা করা হবে৷ 38 দান কর, প্রতিদান তুমিও পাবে৷ তারা তোমাদের অনেক বেশী করে, চেপে চেপে, ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে উপচে দেবে৷ কারণ অন্য়ের জন্য য়ে মাপে মেপে দিচ্ছ, সেই মাপেই তোমাদের মেপে দেওযা হবে৷’ 39 যীশু তাদের কাছে আর একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, ‘একজন অন্ধ কি অন্য একজন অন্ধকে পথ দেখাতে পারে? তাহলে কি তারা উভয়েই গর্তে পড়বে না? 40 কোন ছাত্র তার শিক্ষকের উর্দ্ধে নয়; কিন্তু শিক্ষা সম্পূর্ণ হলে প্রত্যেক ছাত্র তাঁর শিক্ষকের মতো হতে পারে৷ 41 ‘তোমার ভাইয়ের চোখে য়ে কুটো আছে তুমি সেটা দেখছ, কিন্তু তোমার নিজের চোখে য়ে তক্তা আছে সেটা দেখছ না, কেন? 42 তোমার নিজের চোখে য়ে তক্তা আছে তা যখন লক্ষ্য করছ না, তখন কেমন করে তোমার ভাইকে বলতে পার, ‘ভাই তোমার চোখে য়ে কুটোটা আছে, এস তা বের করে দিই৷’ কেন তুমি একথা বল? ভণ্ড প্রথমে তোমার নিজের চোখ থেকে তক্তা বের করে ফেল, আর তবেই তোমার ভাইয়ের চোখে য়ে কুটো আছে, তা বের করার জন্য স্পষ্ট করে দেখতে পাবে৷ 43 ‘কারণ এমন কোন ভাল গাছ নেই যাতে খারাপ ফল ধরে, আবার এমন কোন খারাপ গাছ নেই যাতে ভাল ফল ধরে৷ 44 প্রত্যেক গাছকে তার ফল দিয়েই চেনা যায়৷ লোকে কাঁটা-ঝোপ থেকে ডুমুর ফল তোলে না, বা বুনো ঝোপ থেকে দ্রাক্ষা সংগ্রহ করে না৷ 45 সত্ লোকের অন্তরের ভাল ভাণ্ডার থেকে ভাল জিনিসই বের হয়৷ আর দুষ্ট লোকের মন্দ অন্তর থেকে মন্দ বিষয়ই বের হয়৷ মানুষের অন্তরে যা থাকে তার মুখ সে কথাই বলে৷ 46 ‘তোমরা কেন আমাকে ‘প্রভু, প্রভু বলে ডাক, অথচ আমি যা বলি তা কর না? 47 য়ে কেউ আমার কাছে আসে ও আমার কথা শুনে সেসব পালন করে, সে কার মতো? 48 সে এমন একজন লোকের মতো, য়ে বাড়ি তৈরী করতে গভীর ভাবে খুঁড়ে পাথরের ওপর ভিত গাঁথল৷ তাই যখন বন্যা এল, তখন নদীর জলের ঢেউ এসে সেই বাড়িটিতে আঘাত করল, কিন্তু তা নড়াতে পারল না, কারণ তার ভিত ছিল মজবুত৷ 49 য়ে আমার কথা শোনে অথচ সেই মতো কাজ না করে, সে এমন একজন লোকের মতো, য়ে মাটির উপর ভিত ছাড়াই বাড়ি তৈরী করেছিল৷ পরে নদীর স্রোত এসে তাতে আঘাত করলে তখনই বাড়িটা ভেঙ্গে পড়ল এবং একেবারে ধ্বংস হয়ে গেল৷’
1 যীশু লোকদের যা বলতে চেয়েছিলেন তা বলা শেষ করে কফরনাহূম শহরে গেলেন৷ 2 সেখানে একজন রোমীয় শতপতির এক ক্রীতদাস গুরুতর অসুখে মরনাপন্ন হয়েছিল৷ এই ক্রীতদাসটি শতপতির অতি প্রিয় ছিল৷ 3 শতপতি যখন যীশুর কথা শুনতে পেলেন তখন ইহুদীদের কয়েকজন নেতাকে দিয়ে যীশুর কাছে বলে পাঠালেন, য়েন যীশু এসে তার দাসের জীবন রক্ষা করেন৷ 4 তারা যীশুর কাছে এসে তাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করে বললেন, ‘যার জন্য আপনাকে এই কাজ করতে বলছি, তিনি একজন য়োগ্য লোক৷ 5 কারণ তিনি আমাদের লোকদের ভালবাসেন, আর তিনি আমাদের জন্য একটা সমাজ-গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছেন৷’ 6 তখন যীশু তাদের সঙ্গে গেলেন৷ তিনি যখন সেই বাড়ির কাছাকাছি এসেছেন তখন সেই শতপতি তাঁর বন্ধুদের দিয়ে বলে পাঠালেন, ‘প্রভু আপনি আর কষ্ট করবেন না, কারণ আপনি য়ে আমার বাড়িতে আসেন তার য়োগ্য আমি নই৷ 7 এই কারণেই আমি নিজেকে আপনার কাছে যাবার উপযুক্ত মনে করি না৷ আপনি কেবল মুখে বলুন তাতেই আমার ঐ দাস ভাল হয়ে যাবে৷ 8 কারণ আমিও একজনের অধীনে কাজ করি, আর আমার অধীনেও সৈনিকেরা কাজ করে৷ আমি যদি কাউকে বলি ‘যাও’ তখন সে যায়, আবার কাউকে যদি বলি ‘এস’ তবে সে আসে৷ আর আমি যখন একজনকে বলি, ‘এটা কর,’ তখন সে তা করে৷’ 9 এই কথা শুনে যীশু আশ্চর্য হলেন৷ য়ে সব লোক ভীড় করে তাঁর পিছনে পিছনে আসছিল, তাদের দিকে ফিরে তিনি বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, এমন কি ইস্রায়েলীয়দের মধ্যেও এত বড় বিশ্বাস আমি কখনও দেখিনি৷’ 10 সেনাপতি যাদের পাঠিয়েছিলেন, তারা বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখল য়ে সেই চাকর ভাল হয়ে গেছে৷ 11 এর অল্প দিন পরেই যীশু নাযিন্নামে এক নগরের দিকে যাচ্ছিলেন৷ তাঁর শিষ্যরা এবং আরও অনেক লোক তাঁর সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল৷ 12 তিনি যখন সেই নগরের ফটকের কাছাকাছি এসেছেন, তখন একজন মৃত লোককে বয়ে নিয়ে যাওযা হচ্ছিল৷ সেই মৃত লোকটি ছিল তার বিধবা মায়ের একমাত্র পুত্র৷ সেই নগরের অনেক লোক সেই বিধবার সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল৷ 13 সেই বিধবাকে দেখে তার জন্য প্রভুর খুবই দযা হল৷ তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি কেঁদো না৷’ 14 তারপর তিনি কাছে এসে শবের খাট ছুঁলেন, তখন যাঁরা মৃতদেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তারা দাঁড়িয়ে পড়ল৷ এমন সময় যীশু বললেন, ‘যুবক, আমি তোমায় বলছি তুমি ওঠো৷’ 15 তখন সেই লোকটি উঠে বসল, আর কথা বলতে শুরু করল৷ যীশু তখন তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেন৷ 16 এই দেখে সকলের মন ভয় ও ভক্তিতে পূর্ণ হল৷ তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলতে লাগল, ‘আমাদের মধ্যে একজন মহান ভাববাদীর আবির্ভাব হয়েছে৷’ তারা আরও বলতে লাগল, ‘ঈশ্বর তাঁর লোকদের সাহায্য করতে এসেছেন৷’ 17 যীশুর বিষয়ে এই সব কথা যিহূদিযায় ও তার আশপাশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল৷ 18 বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের অনুগামীরা এই সব ঘটনার কথা য়োহনকে জানাল৷ তখন য়োহন তাঁর দুজন অনুগামীকে ডেকে 19 প্রভুর কাছে জিজ্ঞেস করে পাঠালেন য়ে, ‘য়াঁর আগমণের কথা আছে আপনিই কি সেই, না আমরা অন্য কারোর জন্য অপেক্ষা করব?’ 20 সেই লোকেরা যীশুর কাছে এসে বলল, ‘বাপ্তিস্মদাতা য়োহন আপনার কাছে আমাদের জিজ্ঞেস করতে পাঠিয়েছেন৷ ‘য়াঁর আসবার কথা আপনিই কি সেই ব্যক্তি, না আমরা অন্য কারো অপেক্ষায় থাকব?” 21 সেই সময় যীশু অনেক লোককে বিভিন্ন রোগ ও ব্যাধি থেকে সুস্থ করছিলেন, অশুচি আত্মায় পাওযা লোকদের ভাল করছিলেন, আর অনেক অন্ধ লোককে দৃষ্টি শক্তি দান করছিলেন৷ 22 তখন তিনি তাদের প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘তোমরা যা দেখলে ও শুনলে তা গিয়ে য়োহনকে বল৷ অন্ধেরা দেখতে পাচ্ছে, খোঁড়ারা হাঁটছে, কুষ্ঠ রোগীরা সুস্থ হচ্ছে, বধিরেরা শুনছে, মরা মানুষ বেঁচে উঠছে;আর দরিদ্ররা সুসমাচার শুনতে পাচ্ছে৷ 23 ধন্য সেই লোক, য়ে আমাকে গ্রহণ করার জন্য মনে কোন দ্বিধা বোধ করে না৷’ 24 য়োহনের কাছ থেকে যাঁরা এসেছিল তারা চলে গেলে পর যীশু সমবেত সেই লোকদের কাছে য়োহনের বিষয়ে বললেন, ‘তোমরা প্রান্তরের মধ্যে কি দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে একটি বেত গাছ দুলছে তাই? 25 তা না হলে কি দেখতে গিয়েছিলে? একজন লোক বেশ জমকালো পোশাক পরা? না৷ যাঁরা দামী জামা কাপড় পরে এবং বিলাসে জীবন কাটায় তারা তো প্রাসাদে থাকে৷ 26 তবে তোমরা কি দেখতে গিয়েছিলে? একজন ভাববাদীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা য়াঁকে দেখেছ তিনি একজন ভাববাদীর থেকেও মহান৷ 27 ইনি সেই লোক য়াঁর বিষয়ে লেখা হয়েছে:‘দেখ, আমি তোমার আগে আগে আমার এক সহায়কে পাঠাচ্ছি৷ সে তোমার আগে গিয়ে তোমার পথ প্রস্তুত করবে৷’ মালাখি 3:1 28 আমি তোমাদের বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকল মানুষের মধ্যে য়োহনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ নেই, তবু ঈশ্বরের রাজ্যে ক্ষুদ্রতম ব্যক্তিও য়োহনের চেয়ে মহান৷’ 29 যাঁরা যীশুর প্রচার শুনেছিল, তাদের মধ্যে পাপীষ্ঠরা ও কর আদায়কারীরাও য়োহনের বাপ্তিস্ম নিয়ে স্বীকার করল য়ে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ৷ 30 কিন্তু ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা য়োহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিতে অস্বীকার করে তাদের জীবনে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে অগ্রাহ্য় করল৷ 31 ‘তাহলে আমি কিসের সঙ্গে এই যুগের লোকদের তুলনা করব? এরা কেমন ধরণের লোক? 32 এরা ছোট ছেলেদের মতো, যাঁরা হাটে বসে একে অপরকে বলে,‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম, কিন্তু তোমরা নাচলে না৷ আমরা তোমাদের জন্য শোকগাথা গাইলাম, কিন্তু তোমরা কাঁদলে না৷’ 33 কারণ বাপ্তিস্মদাতা য়োহন এসেছেন, তিনি রুটি খান না আর দ্রাক্ষারস পানও করেন না, আর তোমরা বল, ‘ওকে ভূতে পেয়েছে৷’ 34 মানবপুত্র এসে পানাহার করেন; আর তোমরা বল, ‘দেখ! ও পেটুক, মদ্য়পাযী, আবার পাপী ও কর আদায়কারীদের বন্ধু৷’ 35 প্রজা তার কাজের দ্বারাই প্রমাণ করে য়ে তা নির্দোষ৷’ 36 একদিন একজন ফরীশী তাঁর বাড়িতে যীশুকে নিমন্ত্রণ করল৷ তাই তিনি তার বাড়িতে গিয়ে সেখানে খাবার আসন নিলেন৷ 37 সেই নগরে একজন দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোক ছিলেন৷ ফরীশীর বাড়িতে যীশু খেতে এসেছেন জানতে পেরে সে একটা শ্বেত পাথরের শিশিতে করে বহুমূল্য আতর নিয়ে এল৷ 38 সে যীশুর পিছনে তাঁর পায়ের কাছে নতজানু হয়ে কেঁদে কেঁদে চোখের জলে তাঁর পা ভিজাতে লাগল৷ তারপর সে তার মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা মুছিয়ে দিল, আর তাঁর পায়ে চুমু দিয়ে সেই আতর তাঁর পায়ে ঢেলে দিল৷ 39 য়ে ফরীশী যীশুকে নিমন্ত্রণ করেছিল, এই দেখে সে মনে মনে বলল, ‘এই লোকটা যদি ভাববাদী হয় তবে নিশ্চয়ই বুঝতে পারত, য়ে তার পা ছুঁচ্ছে সে কে এবং কি ধরণের স্ত্রীলোক, এবং এও জানতে পারত য়ে স্ত্রীলোকটি পাপী৷’ 40 এর জবাবে যীশু তাকে বললেন, ‘শিমোন, তোমাকে আমার কিছু বলার আছে৷’শিমোন বলল, ‘বেশ তো গুরু, বলুন৷’ 41 যীশু বললেন, ‘কোন এক মহাজনের কাছে দুজন লোক টাকা ধারত৷ একজন পাঁচশো রূপোর মুদ্রা আর একজন পঞ্চাশ রূপোর মুদ্রা৷ 42 কিন্তু তারা কেউই ঋণ শোধ করতে না পারাতে তিনি দযা করে উভয়ের ঋণই মুকুব করে দিলেন৷ এখন এদের মধ্যে কে তাঁকে বেশী ভালবাসবে?’ 43 শিমোন বলল, ‘আমি মনে করি যার বেশী ঋণ মকুব করা হল সেই৷’যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি ঠিক বলেছ৷’ 44 এরপর যীশু সেই স্ত্রীলোকটির দিকে ফিরে শিমোনকে বললেন, ‘তুমি এই স্ত্রীলোকটিকে দেখছ? আমি তোমার বাড়িতে এলাম আর তুমি আমায় পা ধোবার জল পর্যন্ত দিলে না৷ কিন্তু ও চোখের জলে আমার পা ধুইয়ে দিল আর নিজের চুল দিয়ে তা মুছিয়ে দিল৷ 45 স্বাগত জানাবার প্রথা অনুসারে তুমি আমায় চুমু দিলে না; কিন্তু আমি আসার পর থেকেই সে আমার পায়ে চুমু দিয়ে চলেছে৷ 46 তুমি আমার মাথায় তেল দিয়ে অভিষেক করলে না; কিন্তু সে আমার পায়ে সুগন্ধি আতর ঢেলে তা অভিষিক্ত করল৷ 47 এতেই বোঝা যায় য়ে সে বেশী ভালবাসা দেখাচ্ছে, সেইজন্যই আমি বলছি, এর পাপ অনেক হলেও তা ক্ষমা করা হয়েছে; কিন্তু যাকে অল্প ক্ষমা করা হয়, সে অল্প ভালবাসে৷’ 48 এরপর যীশু সেই স্ত্রী লোকটিকে বললেন, ‘তোমার পাপের ক্ষমা হল৷’ 49 যাঁরা তাঁর সঙ্গে খেতে বসেছিল, তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘ইনি কে য়ে পাপ ক্ষমা করেন?’ 50 কিন্তু যীশু সেই স্ত্রী লোকটিকে বললেন, ‘তোমার বিশ্বাসই তোমায় মুক্ত করেছে, তোমার শান্তি হোক৷’
1 এরপর যীশু গ্রামে ও নগরে নগরে ঘুরে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন; তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেই বারোজন প্রেরিত৷ 2 এমন কয়েকজন স্ত্রীলোকও তাঁর সঙ্গে ছিলেন, যাঁরা নানারকম রোগ ব্যাধি থেকে সুস্থ হয়েছিলেন ও অশুচি আত্মার কবল থেকে মুক্ত হয়েছিলেন৷ এঁদের মধ্যে ছিলেন মরিয়ম মগ্দলীনী, এর মধ্যে যীশু সাতটি মন্দ আত্মা দূর করে দিয়েছিলেন৷ 3 রাজা হেরোদের বাড়ির অধ্যক্ষ কূষেরস্ত্রী শোশন্না ও আরো অনেক স্ত্রীলোক ছিলেন৷ যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সেবা যত্নের জন্য এরা নিজেদের টাকা খরচ করতেন৷ 4 সেই সময় বিভিন্ন শহর থেকে দলে দলে লোক এসে যীশুর কাছে জড়ো হচ্ছিল, তখন যীশু তাদের উপদেশ দিতে গিয়ে এই দৃষ্টান্তটি বললেন: 5 ‘একজন চাষী বীজ বুনতে গেল৷ সে যখন বীজ বুনছিল তখন কিছু পথের পাশে পড়ল, আর লোকে তা মাড়িয়ে গেল, পাখিতে তা খেয়ে গেল৷ 6 কিছু বীজ পাথুরে জমির ওপর পড়ল, সেই বীজগুলো থেকে অঙ্কুর বের হল বটে, কিন্তু মাটিতে রস না থাকায় তা শুকিয়ে গেল৷ 7 কিছু বীজ ঝোপের মধ্যে পড়ল৷ কাঁটাগাছ বেড়ে উঠে চারাগুলিকে চেপে দিল৷ 8 আবার কিছু বীজ ভাল জমিতে পড়ল, সেগুলি বেড়ে উঠলে যা বোনা হয়েছিল তার একশো গুণ বেশী ফসল হল৷’এই কথা বলার পর তিনি চিত্কার করে বললেন, ‘যার শোনবার মত কান আছে, সে শুনুক৷’ 9 তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে এই দৃষ্টান্তটির অর্থ কি তা জিজ্ঞেস করলেন৷ 10 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ় তত্ত্ব তোমাদের জানতে দেওযা হয়েছে; কিন্তু বাকি সকলের কাছে দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বলা হয়েছে:‘য়েন তারা দেখেও না দেখে, শুনেও না বোঝে৷’যিশাইয় 6:9 11 ‘দৃষ্টান্তটির অর্থ এই, বীজ হল ঈশ্বরের শিক্ষা৷ 12 য়ে বীজ পথের ধারে পড়েছিল তা এমন লোকদের বোঝায়, যাঁরা শোনে, তারপর দিযাবল এসে তাদের অন্তর থেকে ঈশ্বরের শিক্ষা হরণ করে নিয়ে যায়, য়েন তারা বিশ্বাস করে মুক্তি না পায়৷ 13 য়ে বীজ পাথুরে জমিতে পড়েছিল তা এমন লোকদের বোঝায়, যাঁরা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দের সঙ্গে তা গ্রহণ করে; কিন্তু মাটি না থাকাতে তাদের কোন শিকড় গজায়নি৷ কিছু দিনের জন্য তারা বিশ্বাস করে বটে; কিন্তু কঠিন পরীক্ষার সময় তারা পিছিয়ে যায়৷ 14 কাঁটা ঝোপের মধ্যে য়ে বীজ পড়ল তা সেই সব লোককে বোঝায়, যাঁরা শোনে; কিন্তু পরে জগত সংসারের চিন্তা ভাবনা, ধন-সম্পত্তি ও সুখভোগের মধ্যে তা চাপা পড়ে যায়, আর তারা কখনও ভাল ফল উত্পন্ন করে না৷ 15 য়ে বীজ ভাল জমিতে পড়ল তা হচ্ছে সেই সব লোকের প্রতীক যাদের অন্তর সত্যতা ও সরলতায় ভরা, তারা যখন ঈশ্বরের শিক্ষা শোনে তখন তা ধরে রাখে, আর স্থির থেকে জীবনে ফল উত্পন্ন করে৷ 16 ‘কেউ বাতি জ্বেলে তা কোন পাত্র দিয়ে ঢেকে রাখে না, অথবা খাটের নীচে রাখে না৷ তার পরিবর্তে সে তা বাতিদানের ওপরই রাখে, য়েন ভেতরে যাঁরা আসে তারা আলো দেখতে পায়৷ 17 এমন কিছু লুকানো নেই যা প্রকাশ পাবে না, এমন কিছু গোপন নেই যা জানা যাবে না কিংবা আলোয় ফুটে উঠবে না৷ 18 তাই কিভাবে শুনছ তাতে মন দাও, কারণ যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে৷ আর যার নেই তার যা আছে বলে সে মনে করে, তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওযা হবে৷ 19 এই সময় যীশুর মা ও ভাইরা তাঁকে দেখতে এসেছিলেন; কিন্তুভীড়ের জন্য তাঁরা যীশুর কাছে পৌঁছাতে পারলেন না৷ 20 তখন একজন লোক তাঁকে বলল, ‘আপনার মা ও ভাইরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান৷’ 21 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘তারাই আমার মা, আমার ভাই, যাঁরা ঈশ্বরের শিক্ষা শুনে সেই অনুসারে কাজ করে৷’ 22 সেই সময় একদিন যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নিয়ে একটি নৌকায় উঠলেন৷ তিনি তাঁদের বললেন, ‘চল, আমরা হ্রদের ওপারে যাই৷’ তাঁরা রওনা দিলেন৷ 23 নৌকা চলতে থাকলে যীশু নৌকার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লেন৷হ্রদের মধ্যে হঠাত্ ঝড় উঠল আর তাঁদের নৌকাটি জলে ভর্তি হয়ে য়েতে লাগল, এতে তাঁরা খুবই বিপদে পড়লেন৷ 24 তখন শিষ্যরা যীশুর কাছে এসে তাঁকে জাগিয়ে তুলে বললেন, ‘গুরু! গুরু! আমরা য়ে সত্যিই ডুবতে বসেছি৷তখন যীশু উঠে ঝোড়ো বাতাস ও তুফানকে ধমক দিলেন৷ সঙ্গে সঙ্গে ঝড় ও তুফান থেমে গেল, আর সব কিছু শান্ত হোল৷ 25 তখন যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, ‘তোমাদের বিশ্বাস কোথায়?’কিন্তু তাঁরা ভয় ও বিস্ময়ে বিহ্বল হয়ে গিয়েছিলেন৷ তাঁরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগলেন, ‘ইনি কে য়ে ঝড় এবং সমুদ্রকে হুকুম করেন আর তারা তাঁর কথা শোনে!’ 26 এরপর তাঁরা গালীল হ্রদের ওপারে গেরাসেনীদের অঞ্চলে গিয়ে পৌঁছালেন৷ 27 যীশু যখন তীরে নামছেন, সেই সময় সেই নগর থেকে একজন লোক তাঁর সামনে এল৷ এই লোকটির মধ্যে অনেকগুলো মন্দ আত্মা ছিল৷ বহুদিন ধরে সে জামা কাপড় পরত না ও বাড়িতে থাকত না কিন্তু কবরখানায় থাকত৷ 28 সে যীশুকে দেখতে পেয়ে চিত্কার করে উঠল ও তাঁর সামনে এসে উবুড় হয়ে পড়ে চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘পরমেশ্বরের পুত্র যীশু, আমাকে নিয়ে আপনার কি কাজ, আমি আপনাকে মিনতি করছি, আমায় যন্ত্রণা দেবেন না৷’ সে এই কথা বলল, কারণ যীশু সেই ভূতকে তার মধ্য থেকে বের হয়ে যাবার জন্য হুকুম করলেন৷ সেই ভূত প্রায়ই লোকটাকে চেপে ধরত, তাকে বেড়ি ও শেকল দিয়ে বেঁধে রাখলেও তা ছিঁড়ে ফেলে ভূত তাকে প্রান্তরে তাড়িয়ে নিয়ে য়েত৷ 29 30 তখন যীশু তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার নাম কি?’সে বলল, ‘বাহিনী!’ কারণ অনেকগুলো ভূত একসঙ্গে তার মধ্যে ঢুকেছিল৷ 31 তারা যীশুকে মিনতির সুরে বলল, য়েন তিনি তাদের রসাতলে যাওযার হুকুম না করেন৷ 32 সেই সময় পাহাড়ের ঢালে একপাল শুযোর চরছিল৷ সেই ভূতরা যীশুকে মিনতি করে বলল য়েন তিনি তাদেরকে ঐ শুযোর পালে ঢোকার অনুমতি দেন৷ যীশু তখন তাদের সেই অনুমতি দিলেন৷ 33 তাতে ভূতরা সেই লোকটির ভেতর থেকে বেরিয়ে ঐ শুযোরগুলোর মধ্যে ঢুকল, আর সেই শুযোরের পাল হ্রদের ঢাল দিয়ে জোরে দৌড়ে গিয়ে জলে ডুবে মরল৷ 34 যাঁরা শুযোরের পাল চরাচ্ছিল, এই ঘটনা দেখে তারা দৌড়ে গিয়ে সেই নগরে ও সারা দেশে এই খবর দিল; 35 আর কি হয়েছে তা দেখবার জন্য লোকেরা বের হয়ে এল৷ তারা যীশুর কাছে এসে দেখল, যার মধ্যে থেকে ভূতগুলো বের হয়েছে সে কাপড় পরে শান্তভাবে যীশুর পায়ের কাছে বসে আছে৷ এই দেখে তারা ভয় পেয়ে গেল৷ 36 যাঁরা এই ঘটনা দেখেছিল তারা ঐ লোকদের কাছে বলল, কেমন করে ঐ ভূতে পাওযা লোকটি সুস্থ হল৷ 37 তখন গেরাসেনী অঞ্চলের সমস্ত লোক যীশুকে তাদের কাছ থেকে চলে য়েতে অনুরোধ করল, কারণ তারা ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল৷ তখন যীশু ফিরে যাবার জন্য নৌকায় উঠলেন৷ 38 তখন য়ে লোকটির মধ্য থেকে ভূত বের হয়ে গিয়েছিল, সে যীশুর সঙ্গে যাবার জন্য মিনতি করতে লাগল৷কিন্তু যীশু তাকে অনুমতি দিলেন না৷ 39 তিনি বললেন, ‘তুমি বাড়ি ফিরে যাও; আর ঈশ্বর তোমার জন্য যা করেছেন তা সকলকে বল৷’ তখন সে সেখান থেকে চলে গেল, আর যীশু তার জন্য যা করেছেন তা সারা শহর বলে বেড়াতে লাগল৷ 40 যীশু যখন ফিরে এলেন তখন এক বিরাট জনতা তাঁকে স্বাগত জানাল, কারণ তারা সকলে যীশুর ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিল৷ 41 ঠিক সেই সময় যাযীর নামে একজন লোক সেখানে এলেন, ইনি সেখানকার সমাজগৃহের নেতা৷ তিনি যীশুর পায়ের কাছে উপুড় হয়ে পড়ে তাঁকে অনুরোধ করলেন, য়েন যীশু তাঁর সঙ্গে তাঁর বাড়িতে যান৷ 42 কারণ তখন তাঁর একমাত্র সন্তান, বারো বছরের মেয়েটি মৃত্যুশয়্য়ায় ছিল৷যীশু যখন যাচ্ছিলেন, লোকেরা তাঁর চারদিকে ভীড় করে ধাক্কা-ধাক্কি করতে লাগল৷ 43 সেই ভীড়ের মধ্যে একজন স্ত্রীলোক ছিল য়ে বারো বছর ধরে রক্তস্রাব রোগে ভুগছিল৷ চিকিত্সকদের পিছনে সে তার যথাসর্বস্ব ব্যয় করেছিল, কিন্তু কেউ তাকে ভাল করতে পারে নি৷ 44 সে যীশুর পেছন দিকে এসে তাঁর পোশাকের ঝালর স্পর্শ করল, সঙ্গে সঙ্গে তার রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গেল৷ 45 তখন যীশু বললেন, ‘কে আমাকে স্পর্শ করল?’ সবাই অস্বীকার করল, তখন পিতর বললেন, ‘গুরু, লোকেরা আপনার চারপাশে ধাক্কা-ধাক্কি করে আপনার ওপর পড়ছে৷’ 46 কিন্তু যীশু বললেন, ‘কেউ আমায় স্পর্শ করেছে! কারণ আমি জানি আমার মধ্যে থেকে শক্তি বের হয়েছে৷’ 47 সেই স্ত্রীলোকটি যখন দেখল য়ে সে কোনমতে এড়িয়ে য়েতে পারবে না, তখন কাঁপতে কাঁপতে যীশুর কাছে এসে তার সামনে উপুড় হয়ে পড়ল এবং সকলের সামনে বলল কেন সে যীশুকে স্পর্শ করেছে, আর কিভাবে সঙ্গে সঙ্গে ভাল হয়ে গেছে৷ 48 তখন যীশু সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, ‘তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে, তোমার শান্তি হোক্৷’ 49 তিনি তখনও কথা বলছেন, এমন সময় সমাজ-গৃহের নেতার বাড়ি থেকে একজন এসে বলল, ‘আপনার মেয়ে মারা গেছে! গুরুকে আর কষ্ট দেবেন না৷’ 50 যীশু এই কথা শুনতে পেয়ে সমাজ-গৃহের নেতাকে বললেন, ‘ভয় পেও না! কেবল বিশ্বাস কর, সে নিশ্চয়ই সুস্থ হয়ে উঠবে৷’ 51 যীশু সেই বাড়িতে পৌঁছে পিতর, যাকোব, য়োহন ও মেয়েটির মা-বাবা ছাড়া আর কাউকে সেই ঘরে ঢুকতে দিলেন না৷ 52 সেখানে অনেক লোক মেয়েটির জন্য শোক করছিল ও কাঁদছিল৷ যীশু তাদের বললেন, ‘কান্না বন্ধ কর, কারণ ও তো মরে নি, ও ঘুমোচ্ছে৷’ 53 তাঁর কথা শুনে লোকেরা হাসাহাসি করতে লাগল, কারণ তারা জানত মেয়েটি মারা গেছে৷ 54 যীশু মেয়েটির হাত ধরে ডাক দিলেন, ‘খুকুমনি ওঠ!’ 55 সেই মুহূর্তে তার আত্মা ফিরে এল, আর সে উঠে দাঁড়াল৷ যীশু তাদের আদেশ করলেন, ‘য়েন তাকে কিছু খেতে দেওযা হয়৷’ 56 মেয়েটির মা বাবা খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন৷ যীশু তাদের বারণ করলেন য়েন তারা এই ঘটনার কথা কাউকে না বলে৷
1 যীশু সেই বারোজন প্রেরিতকে ডেকে তাঁদের সব রকমের ভূত তাড়াবার ক্ষমতা ও নানান রোগ ভাল করার ক্ষমতা দিলেন৷ 2 এরপর তিনি তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় প্রচার করতে ও রোগীদের সুস্থ করার জন্য পাঠালেন৷ 3 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা যাত্রা পথের জন্য কিছুই নিও না, পথে যাবার জন্য লাঠি, ঝুলি, খাবার বা টাকা পয়সা কিছুই নিও না, এমন কি দুটো জামাও না৷ 4 য়ে বাড়িতে তোমরা প্রবেশ করবে, সেই গ্রাম ছেড়ে না যাওযা পর্যন্ত সেই বাড়িতেই থেকো৷ 5 য়েখানে লোকেরা তোমাদের স্বাগত জানাবে না সেখানে শহর ছেড়ে অন্যত্র যাবার সময় তাদের বিরুদ্ধে প্রামাণিক সাক্ষ্যস্বরূপ তোমাদের পায়ের ধূলো ঝেড়ে ফেল৷’ 6 তখন তাঁরা গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে য়েতে য়েতে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার ও রোগীদের সুস্থ করতে লাগলেন৷ 7 সেই সময় য়ে সব ঘটনা ঘটছিল রাজ্যপাল হেরোদ তা শুনে খুবই বিচলিত হয়ে পড়লেন৷ কারণ কেউ কেউ বলছিল, ‘য়োহন আবার বেঁচে উঠেছেন৷’ 8 আবার অনেকে বলছিল, ‘এলীয় পুনরায় আবির্ভূত হয়েছেন৷’ কেউ কেউ বলছিল, ‘প্রাচীনকালের, ভাববাদীদের মধ্যে কোন একজন পুনরায় মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত হয়েছেন৷’ 9 কিন্তু হেরোদ বললেন, ‘আমি য়োহনের মাথা কেটে ফেলেছি; কিন্তু যার বিষয়ে আমি এসব কথা শুনছি, এ তবে কে?’ আর তিনি যীশুকে দেখবার চেষ্টা করতে লাগলেন৷ 10 প্রেরিতরা ফিরে এসে তাঁরা কি কি করেছেন তা যীশুকে জানালেন৷ তখন যীশু তাঁদের নিয়ে নিভৃতে বৈত্সৈদা নগরে চলে গেলেন৷ 11 কিন্তু লোকেরা জানতে পেরে গেল য়ে তিনি কোথায় যাচ্ছেন, আর তারা যীশুর পিছু পিছু চলল৷ যীশুও তাদের সাদরে গ্রহণ করে তাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বললেন, আর য়ে সব লোকের রোগ-ব্যাধি ভাল হবার প্রযোজন ছিল, তাদের সুস্থ করলেন৷ 12 দিন প্রায় শেষ হয়ে আসছে, এমন সময় সেই বারোজন প্রেরিত যীশুর কাছে ফিরে এসে বললেন, ‘আমরা য়েখানে আছি এটা একটা নির্জন স্থান, তাই এই লোকদের বিদায় দিন য়েন এরা আশপাশের গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য থাকবার স্থান ও খাবার জোগাড় করে নিতে পারে৷’ 13 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরাই এদের খেতে দাও৷’কিন্তু তারা বললেন, ‘আমাদের কাছে তো পাঁচখানা রুটি আর দুটো মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই৷ আমরা গিয়ে কি এই সব লোকদের জন্য খাবার কিনে আনব?’ 14 সেখানে পুরুষ মানুষই ছিল প্রায় পাঁচ হাজার৷কিন্তু যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘ওদেরকে এক এক দলে পঞ্চাশ জন করে বসিয়ে দাও৷’ 15 তাঁরা সেই রকমই করলেন, তাদের সকলকেই বসিয়ে দিলেন৷ 16 এরপর যীশু সেই পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে সেগুলোর জন্য স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন৷ পরে তিনি সেগুলোকে টুকরো টুকরো করে তা পরিবেশন করার জন্য শিষ্যদের হাতে দিলেন৷ 17 সকলে বেশ তৃপ্তি করে খেল, বাকি যা পড়ে রইল তা একসঙ্গে জড় করলে বারোটি টুকরি ভরে গেল৷ 18 একদিন যীশু কোন এক জায়গায় নিভৃতে প্রার্থনা করছিলেন৷ তাঁর শিষ্যরা সেখানে এলে তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘লোকেরা কি বলে, আমি কে?’ 19 তাঁরা বললেন, ‘কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা য়োহন, কেউ বা বলে এলীয়, আবার কেউ কেউ বলে প্রাচীনকালের ভাববাদীদের মধ্যে একজন বেঁচে উঠেছেন৷’ 20 তিনি তাঁদের বললেন, ‘কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?’পিতর বললেন, ‘ঈশ্বরের সেই খ্রীষ্ট৷’ 21 তখন তিনি তাঁদের সতর্ক করে দিলেন য়েন একথা তাঁরা কারো কাছে প্রকাশ না করেন৷ 22 তিনি আরো বললেন, ‘মানবপুত্রের অনেক দুঃখ ও যাতনা ভোগ করার প্রযোজন আছে; ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকেরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, তারা তাঁকে হত্যা করবে; আর তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে পুনরুত্থিত হবেন৷’ 23 পরে তিনি তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘যদি কেউ আমার সঙ্গে আসতে চায়, তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক; আর প্রতিদিন নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমায় অনুসরণ করুক৷ 24 য়ে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে, কিন্তু য়ে কেউ আমার জন্য নিজের জীবন হারায় সে তা রক্ষা করবে৷ 25 সমগ্র জগত্ লাভ করে কেউ যদি নিজেকে ধ্বংস করে তবে তার কি লাভ হল? 26 যদি কেউ আমার জন্য ও আমার শিক্ষার জন্য লজ্জা বোধ করে, তবে যখন মানবপুত্র নিজ মহিমায় এবং পিতা পবিত্র স্বর্গদূতদের মহিমায় আসবেন তখন তিনিও তার জন্য লজ্জিত হবেন৷ 27 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে এমন কয়েকজন আছে যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্য না দেখা পর্যন্ত মৃত্যুর মুখ দেখবে না৷’ 28 এইসব কথা বলার প্রায় আট দিন পর, তিনি পিতর, যাকোব ও য়োহনকে নিয়ে প্রার্থনা করার জন্য একটা পর্বতে গেলেন৷ 29 যীশু যখন প্রার্থনা করছিলেন, তখন তাঁর মুখের চেহারা অন্যরকম হয়ে গেল, তাঁর পোশাক আলোক শুভ্র হয়ে উঠল৷ 30 দু ব্যক্তি মোশি ও এলীয় মহিমান্বিত হয়ে সেখানে এসে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন৷ 31 তাঁরা ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযাযী জেরুশালেমে কিভাবে যীশুর মৃত্যু হবে তাই নিয়ে কথা বলছিলেন৷ 32 কিন্তু পিতর ও তাঁর অন্য সঙ্গীরা সেই সময় ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন৷ তাঁরা জেগে উঠে যীশুকে মহিমান্বিত রূপে দেখতে পেলেন, আর ঐ দুই ব্যক্তিকে যীশুর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন৷ 33 সেই ব্যক্তিরা যখন যীশুর কাছ থেকে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পিতর যীশুকে বললেন, ‘গুরু, ভালোই হয়েছে য়ে আমরা এখানে আছি৷ আমরা এখানে তিনটে কুটীর তৈরী করি, একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য আর একটা এলিয়র জন্য৷’ তিনি জানতেন না য়ে তিনি কি বলছিলেন৷ 34 কিন্তু তিনি যখন এইসব কথা বলছিলেন, সেই সময় এক খণ্ড মেঘ এসে তাঁদের ঢেকে ফেলল, মেঘের মধ্যে প্রবেশ করে তাঁরা ভীত হলেন৷ 35 সেই মেঘের মধ্য থেকে এক রব শোনা গেল৷ সেই রব বলল, ‘এই আমার পুত্র, আমার মনোনীত পাত্র, তাঁর কথা শোন৷’ 36 সেই রব মিলিয়ে যাবার পরই দেখা গেল কেবল যীশু একা সেখানে রয়েছেন আর শিষ্যরা যা দেখলেন সে বিষয়ে কাউকে কিছু না বলে চুপ করে রইলেন৷ 37 পরদিন তাঁরা পর্বত থেকে নেমে এলে বহু লোক যীশুর সঙ্গে দেখা করতে এল, 38 আর সেই সময় ঐ ভীড়ের মধ্য থেকে একটি লোক চিত্কার করে বলল, ‘গুরু, আমি আপনাকে মিনতি করছি আপনি আমার এই একমাত্র সন্তানের দিকে একটু দেখুন৷ 39 হঠাত্, একটা অশুচি আত্মা তাকে ধরে, আর সে চিত্কার করতে থাকে৷ সেই আত্মা যখন তাকে মুচড়ে ধরে তখন তার মুখ থেকে ফেনা কাটতে থাকে৷ এটা সহজে তাকে ছেড়ে য়েতে চায় না, তাকে একবারে ঝাঁঝরা করে দেয়৷ 40 আমি আপনার শিষ্যদের কাছে মিনতি করেছিলাম য়েন তাঁরা ঐ অশুচি আত্মাকে তাড়িয়ে দেন, কিন্তু তাঁরা পারলেন না৷’ 41 যীশু বললেন, ‘হে অবিশ্বাসী ও পথভ্রষ্ট লোকেরা, আমি আর কতকাল তোমাদের নিয়ে ধৈর্য্য ধরব, কতকালই বা তোমাদের সঙ্গে থাকব?’ যীশু লোকটিকে বললেন, ‘তোমার ছেলেকে এখানে আন৷’ 42 ছেলেটা যখন আসছিল, তখন সেই ভূত তাকে আছাড় মারল আর তাতে সে প্রবলভাবে হাত-পা ছোঁড়াছুঁড়ি করতে লাগল৷ যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমক দিলেন৷ তারপর ছেলেটিকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তার বাবার কাছে ফেরত্ দিলেন৷ 43 ঈশ্বর য়ে কত মহান তা দেখে লোকেরা অবাক হয়ে গেল৷যীশু যা করলেন তা দেখে লোকেরা আশ্চর্য হচ্ছিল, তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 44 ‘আমি তোমাদের যা বলছি তা মন দিয়ে শোন, শীঘ্রই মানবপুত্রকে মানুষের হাতে সঁপে দেওযা হবে৷’ 45 কিন্তু এ কথার অর্থ কি শিষ্যরা তা বুঝতে পারলেন না৷ এটা তাঁদের কাছে গুপ্ত রয়ে গেল, তাই তাঁরা এর কিছুই উপলদ্ধি করতে পারলেন না৷ 46 সেই সময়ই তাঁদের মধ্যে এই বিতর্কের সূত্রপাত হল য়ে কে তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ৷ 47 কিন্তু যীশু তাঁদের মনোভাব বুঝতে পেরে একটি শিশুকে এনে নিজের পাশে দাঁড় করালেন৷ 48 তিনি তাঁদের বললেন, ‘য়ে কেউ আমার নামে এই শিশুকে সাদরে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে; আর য়ে আমাকে সাদরে গ্রহণ করে, সে আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন তাঁকেই গ্রহণ করে৷ তোমাদের মধ্যে য়ে সবচেয়ে ছোট, সেই শ্রেষ্ঠ৷’ 49 য়োহন বললেন, ‘প্রভু আমরা আপনার নামে একজনকে ভূত তাড়াতে দেখেছি৷ সে আমাদের সঙ্গী নয় বলে আমরা তাকে বারণ করেছি৷’ 50 কিন্তু যীশু তাঁকে বললেন, ‘তাকে বারণ কোর না, কারণ য়ে তোমাদের বিপক্ষ নয়, সে তোমাদের সপক্ষ৷’ 51 যীশুর স্বর্গে যাবার সময় হয়ে এলে তিনি স্থির চিত্তে জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন৷ 52 তিনি তাঁর পৌঁছাবার আগেই সেখানে কিছু বার্তবাহক পাঠালেন৷ তাঁরা গিয়ে শমরীয়দের এক গ্রামে উঠলেন, য়েন যীশুর জন্য সব কিছু ব্যবস্থা করতে পারেন৷ 53 কিন্তু যীশু জেরুশালেমে যাবেন বলে স্থির করায় শমরীয়রা তাঁকে গ্রহণ করল না৷ 54 যীশুর অনুগামী যাকোব ও য়োহন এই দেখে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কি চান য়ে এদের ধ্বংস করার জন্য আমরা আকাশ থেকে আগুন নামিয়ে আনি?’ 55 কিন্তু যীশু ফিরে দাঁড়িয়ে তাদের ধমক দিলেন৷ 56 তখন তাঁরা অন্য গ্রামে গেলেন৷ 57 তাঁরা যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, সেই সময় একজন লোক যীশুকে বলল, ‘আপনি য়েখানেই যান না কেন আমিও আপনার সঙ্গে যাব৷’ 58 যীশু তাকে বললেন, ‘শেযালের গর্ত আছে, আকাশের পাখিদেরও বাসা আছে, কিন্তু মানবপুত্রের কোথাও মাথা রাখার ঠাঁই নেই৷’ 59 আর একজনকে তিনি বললেন, ‘আমায় অনুসরণ কর৷’ কিন্তু সেই লোকটি বলল, ‘আগে গিয়ে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসতে দিন৷’ 60 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘মৃতরাই তাদের মৃতদের কবর দেবে৷ তুমি গিয়ে বরং ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় ঘোষণা কর৷’ 61 আর একজন লোক বলল, ‘প্রভু, আমি আপনার অনুসারী হব: কিন্তু প্রথমে আমার বাড়ির সকলকে বিদায় জানিয়ে আসতে দিন৷’ 62 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘লাঙ্গলে হাত রেখে য়ে পেছন ফিরে তাকায়, সে ঈশ্বরের রাজ্যের য়োগ্য নয়৷’
1 এরপর প্রভু আরও বাহাত্তরজন লোককে মনোনীত করলেন৷ তিনি নিজে য়ে সমস্ত নগরে ও য়ে সমস্ত জায়গায় যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন, সেই সব জায়গায় তাঁদের দুজন দুজন করে পাঠিয়ে দিলেন৷ 2 তিনি তাঁদের বললেন, ‘শস্য প্রচুর হয়েছে, কিন্তু তা কাটার জন্য মজুরের সংখ্যা অল্প, তাই শস্যের যিনি মালিক তাঁর কাছে প্রার্থনা কর, য়েন তিনি তাঁর ফসল কাটার জন্য মজুর পাঠান৷ 3 যাও! আর মনে রেখো, নেকড়ে বাঘের মধ্যে ভেড়ার মতোই আমি তোমাদের পাঠাচ্ছি৷ 4 তোমরা টাকার বটুযা, থলি বা জুতো সঙ্গে নিও না এবং পথের মধ্যে কাউকে শুভেচ্ছা জানিও না৷ 5 য়ে বাড়িতে তোমরা প্রবেশ করবে সেখানে প্রথমে বলবে, ‘এই গৃহে শান্তি হোক!’ 6 সেখানে যদি শান্তির পাত্র কেউ থাকে, তবে তোমাদের শান্তি তার সহবর্তী হবে৷ কিন্তু যদি সেরকম কেউ না থাকে, তাহলে তোমাদের শান্তি তোমাদের কাছে ফিরে আসবে৷ 7 য়ে বাড়িতে যাবে সেখানেই থেকো, আর তারা যা খেতে দেয় তাই খেও, কারণ য়ে কাজ করে সে বেতন পাবার য়োগ্য৷ এ বাড়ি সে বাড়ি করে ঘুরে বেড়িও না৷ 8 তোমরা যখন কোন নগরে প্রবেশ করবে তখন সেই নগরের লোকেরা যদি তোমাদের স্বাগত জানায়, তবে সেখানকার লোকেরা তোমাদের সামনে যা কিছু ধরে, তা খেও৷ 9 সেই নগরের রোগীদের সুস্থ কোর ও সেখানকার লোকদের বোল, ‘ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসে পড়েছে৷’ 10 তোমরা কোন নগরে প্রবেশ করলে যদি সেই নগরের লোকেরা তোমাদের স্বাগত না জানায়, তবে সেখানকার রাস্তায় বেরিয়ে এসে তোমরা বোল, 11 ‘এমনকি তোমাদের নগরের য়ে ধূলো আমাদের পায়ে লেগেছে তা আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে ঝেড়ে ফেললাম; তবে একথা জেনে রেখো য়ে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসে গেছে৷’ 12 আমি তোমাদের বলছি, সেই দিন এই নগরের থেকে সদোমের লোকদের অবস্থা অনেক বেশী সহনীয় হবে৷’ 13 ‘কোরাসীন ধিক্ তোমাকে! বৈত্সৈদা ধিক্ তোমাকে! তোমাদের মধ্যে য়ে সব অলৌকিক কাজ করা হয়েছে তা যদি সোর ও সীদোনে করা হত, তবে সেখানকার লোকেরা অনেক আগেই চটের বস্ত্র পরে মাথায় ভস্ম ছিটিয়ে অনুতাপ করতে বসত৷ 14 যাইহোক, বিচারের দিনে সোর সীদোনের অবস্থা বরং তোমাদের চেয়ে অনেক সহনীয় হবে৷ 15 তুমি কফরনাহূম! তুমি কি স্বর্গ পর্যন্ত উন্নীত হবে? না! তোমাকে নরক পর্যন্ত নামানো যাবে! 16 ‘যাঁরা তোমাদের কথা শোনে, তারা আমারই কথা শোনে; আর যাঁরা তোমাদের অগ্রাহ্য় করে, তারা আমাকেই অগ্রাহ্য় করে৷ যাঁরা আমাকে অগ্রাহ্য় করে, তারা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেই অগ্রাহ্য করে৷’ 17 এরপর সেই বাহাত্তরজন আনন্দের সঙ্গে ফিরে এসে বললেন, ‘প্রভু, আপনার নামে এমন কি ভূতরাও আমাদের বশ্যতা স্বীকার করে!’ 18 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘আমি শয়তানকে বিদ্য়ুত্ ঝলকের মতো আকাশ থেকে পড়তে দেখলাম৷ 19 শোন! সাপ ও বিছেকে পায়ে দলবার ক্ষমতা আমি তোমাদের দিয়েছি; আর তোমাদের শত্রুর সমস্ত শক্তির ওপরে ক্ষমতাও আমি তোমাদের দিয়েছি; কোন কিছুই তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে না৷ 20 তবু আত্মারা য়ে তোমাদের বশীভূত হয়, এ জেনে আনন্দ কোর না; কিন্তু স্বর্গে তোমাদের নাম লেখা হয়েছে বলে আনন্দ কর৷’ 21 ঠিক সেই মুহূর্তে পবিত্র আত্মার আনন্দে পূর্ণ হয়ে যীশু বললেন, ‘পিতা, আমি তোমার প্রশংসা করি, কারণ স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, তুমি এসব বিষয় জ্ঞানীগুণী ও বুদ্ধিমান লোকদের কাছে গোপন রেখে শিশুদের কাছে প্রকাশ করেছ৷ হ্যাঁ, পিতা, এতেই তোমার আনন্দ৷ 22 ‘আমার পিতা আমায় সবই দিয়েছেন৷ পিতা ছাড়া আর কেউ জানে না পুত্র কে, আমার পুত্র ছাড়া আর কেউ জানে না পিতা কে৷ এছাড়া পুত্র যার কাছে পিতাকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন, কেবল সে-ই জানে৷’ 23 এরপর শিষ্যদের দিকে ফিরে তিনি একান্তে তাঁদের বললেন, ‘তোমরা যা দেখছ, য়ে চোখ তা দেখতে পায় তা ধন্য! 24 কারণ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যা দেখছ, অনেক ভাববাদী ও রাজা তা দেখার ইচ্ছা করলেও তা দেখতে পান নি; তোমরা যা শুনছ, তা শোনার ইচ্ছা করলেও তাঁরা তা শুনতে পান নি৷’ 25 এরপর একজন ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুকে পরীক্ষার ছলে জিজ্ঞাসা করল, ‘গুরু, অনন্ত জীবন লাভ করার জন্য আমায় কি করতে হবে?’ 26 যীশু তাকে বললেন, ‘বিধি-ব্যবস্থায় এ বিষয়ে কি লেখা আছে? সেখানে তুমি কি পড়েছ?’ 27 সে জবাব দিল, ‘তোমার সমস্ত অন্তর, মন, প্রাণ ও শক্তি দিয়ে অবশ্যই তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসো৷’আর ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসো৷” 28 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি ঠিক উত্তরই দিয়েছ; ঐ সবই কর, তাহলে অনন্ত জীবন লাভ করবে৷’ 29 কিন্তু সে নিজেকে ধার্মিক দেখাতে চেয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমার প্রতিবেশী কে?’ 30 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘একজন লোক জেরুশালেম থেকে যিরীহোর দিকে নেমে যাচ্ছিল, পথে সে ডাকাতের হাতে ধরা পড়ল৷ তারা লোকটির জামা কাপড় খুলে নিয়ে তাকে মারধোর করে আধমরা অবস্থায় সেখানে ফেলে রেখে চলে গেল৷ 31 ঘটনাক্রমে সেই পথ দিয়ে একজন ইহুদী যাজক যাচ্ছিল, যাজক তাকে দেখতে পেয়ে পথের অন্য ধার দিয়ে চলে গেল৷ 32 সেই পথে এরপর একজন লেবীয়এল৷ তাকে দেখে সেও পথের অন্য ধার দিয়ে চলে গেল৷ 33 কিন্তু একজন শমরীয় ঐ পথে য়েতে য়েতে সেই লোকটির কাছাকাছি এল৷ লোকটিকে দেখে তার মনে মমতা হল৷ 34 সে ঐ লোকটির কাছে গিয়ে তার ক্ষতস্থান দ্রাক্ষারস দিয়ে ধুয়ে তাতে তেল ঢেলে বেঁধে দিল৷ এরপর সেই শমরীয় লোকটিকে তার নিজের গাধার ওপর চাপিয়ে একটি সরাইখানায় নিয়ে এসে তার সেবা যত্ন করল৷ 35 পরের দিন সেই শমরীয় দুটি রৌপ্যমুদ্রা বের করে সরাইখানার মালিককে দিয়ে বলল, ‘এই লোকটির যত্ন করবেন আর আপনি যদি এর চেয়ে বেশী খরচ করেন, তবে আমি ফিরে এসে আপনাকে তা শোধ করে দেব৷’ 36 এখন বল, ‘এই তিনজনের মধ্যে সেই ডাকাত দলের হাতে পড়া লোকটির প্রকৃত প্রতিবেশী কে?’ 37 সে বলল, ‘য়ে লোকটি তার প্রতি দযা করল৷’তখন যীশু তাকে বললেন, ‘সে য়েমন করল, যাও তুমি গিয়ে তেমন কর৷’ 38 এরপর যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জেরুশালেমের পথে য়েতে য়েতে কোন এক গ্রামে প্রবেশ করলেন৷ সেখানে মার্থা নামে একজন স্ত্রীলোক তাঁদের সাদর অভ্যর্থনা করলেন৷ 39 মরিয়ম নামে তাঁর একটি বোন ছিল, তিনি যীশুর পায়ের কাছে বসে তাঁর শিক্ষা শুনছিলেন৷ 40 কিন্তু খাওযা-দাওযার নানা রকম আযোজন করতে মার্থা খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন৷ তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কি দেখছেন না, আমার বোন সমস্ত কাজ একা আমার ঘাড়ে ফেলে দিয়েছে? ওকে বলুন ও য়েন আমায় সাহায্য করে৷’ 41 প্রভু তখন মার্থাকে বললেন, ‘মার্থা, মার্থা তুমি অনেক বিষয় নিয়ে বড়ই উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত হয়ে পড়েছ৷ 42 কিন্তু কেবলমাত্র একটা বিষয়ের প্রযোজন আছে৷ আর মরিয়ম সেই উত্তম বিষয়টি মনোনীত করেছে, যা তার কাছ থেকে কখনও কেড়ে নেওযা হবে না৷’
1 যীশু এক জায়গায় প্রার্থনা করছিলেন৷ প্রার্থনা শেষ হলে পর তাঁর একজন শিষ্য এসে তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, য়োহন য়েমন তাঁর শিষ্যদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন, আপনিও তেমনি আমাদের প্রার্থনা করতে শেখান৷’ 2 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা যখন প্রার্থনা কর তখন বোল,‘পিতা, তোমার পবিত্র নামের সমাদর হোক্, তোমার রাজ্য আসুক৷ 3 দিনের আহার তুমি প্রতিদিন আমাদের দাও৷ 4 আমাদের পাপ ক্ষমা কর, কারণ আমাদের বিরুদ্ধে যাঁরা অন্যায় করেছে, আমরাও তাদের ক্ষমা করেছি, আর আমাদের পরীক্ষায় পড়তে দিও না৷” 5 এরপর যীশু তাঁদের বললেন, ‘ধর, তোমাদের কারো একজন বন্ধু আছে৷ আর সে মাঝরাতে তার কাছে গিয়ে বলল, ‘বন্ধু আমায় খান তিনেক রুটি ধার দাও, কারণ আমার এক বন্ধু যাত্রাপথে এই মাত্র আমার ঘরে এসেছে, তাকে খেতে দেবার মতো ঘরে কিছু নেই৷’ 6 7 সেই লোক যদি ঘরের ভেতর থেকে উত্তর দেয়, ‘দেখ, আমায় বিরক্ত কোর না! এখন দরজা বন্ধ আছে আর ছেলেমেয়েদের নিয়ে আমি শুয়ে পড়েছি৷ আমি এখন তোমাকে কিছু দেবার জন্য উঠতে পারব না৷’ 8 আমি তোমাদের বলছি, সে যদি বন্ধু হিসাবে উঠে তাকে কিছু না দেয়, তবু লোকটি বার বার করে অনুরোধ করছে বলে সে উঠবে ও তার যা দরকার তা তাকে দেবে৷ 9 তাই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা চাও, তোমাদের দেওযা হবে, খোঁজ তোমরা পাবে৷ দরজায় ধাক্কা দাও, তোমাদের জন্য দরজা খোলা হবে৷ 10 কারণ যাঁরা চায়, তারা পায়৷ যাঁরা খোঁজ করে, তারা সন্ধান পায় আর যাঁরা দরজায় ধাক্কা দেয়, তাদের জন্য দরজা খোলা হয়৷ 11 তোমাদের মধ্যে এমন বাবা কি কেউ আছে যার ছেলে মাছ চাইলে সে তাকে মাঝের বদলে সাপ দেবে? 12 অথবা ছেলে যদি ডিম চায় তবে তাকে কাঁকড়াবিছা দেবে? 13 তাই তোমরা যদি মন্দ প্রকৃতির হয়েও তোমাদের ছেলেমেয়েদের ভাল ভাল জিনিস দিতে জান, তবে স্বর্গের পিতার কাছে যাঁরা চায়, তিনি য়ে তাদের পবিত্র আত্মা দেবেন, এটা কত না নিশ্চয়৷’ 14 একসময় যীশু একজনের মধ্য থেকে একটা বোবা ভূতকে বের করে দিলেন৷ সেই ভূত বের হয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ঐ লোকটি কথা বলতে শুরু করল৷ এই দেখে লোকেরা অবাক হয়ে গেল৷ 15 কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘ভূতদের রাজা বেলস্বূলের সাহায্যেই ও ভূত তাড়ায়!’ 16 আবার কেউ কেউ যীশুকে পরীক্ষা করবার জন্য আকাশ থেকে কোন চিহ্ন দেখাতে বলল.৷ 17 কিন্তু তিনি তাদের মনের কথা জানতে পেরে বললেন, ‘য়ে রাজ্য আত্মকলহে নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়, সেই রাজ্য ধ্বংস হয়৷ আবার কোন পরিবার যদি নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে, তবে সেই পরিবারও ভেঙ্গে যায়৷ 18 তাই শয়তানও যদি নিজের বিরুদ্ধে নিজে দাঁড়ায় তবে কেমন করে তার রাজ্য টিকবে? আমি তোমাদের একথা জিজ্ঞেস করছি কারণ তোমরা বলছ আমি বেল্সবূলের সাহায্যে ভূত ছাড়াই৷ 19 কিন্তু আমি যদি বেলস্বূলের সাহায্যে ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের অনুগামীরা কার সাহায্যে তা ছাড়ায়? তাই তারাই তোমাদের বিচার করুক৷ 20 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের শক্তিতে ভূতদের ছাড়াই, তাহলে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে য়ে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে ইতিমধ্যেই এসে পড়েছে৷ 21 ‘যখন কোন শক্তিশালী লোক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার ঘর পাহারা দেয়, তখন তার ধনসম্পদ নিরাপদে থাকে৷ 22 ‘কিন্তু তার থেকে পরাক্রান্ত কোন লোক যখন তাকে আক্রমণ করে পরাস্ত করে, তখন নিরাপদে থাকার জন্য য়ে অস্ত্রশস্ত্রের ওপর সে নির্ভর করেছিল, অন্য শক্তিশালী লোকটি সেগুলো কেড়ে নেয় আর ঐ লোকটির ঘরের সব জিনিসপত্র লুটে নেয়৷ 23 ‘য়ে আমার পক্ষে নয়, সে আমার বিপক্ষ৷ য়ে আমার সঙ্গে কুড়ায়না, সে ছড়ায়৷ 24 ‘কোন অশুচি আত্মা যখন কোন লোকের মধ্য থেকে বের হয়ে আসে, তখন সে বিশ্রামের খোঁজে নির্জন স্থানে ঘোরাফেরা করে আর বিশ্রাম না পেয়ে বলে, ‘য়ে ঘর থেকে আমি বের হয়ে এসেছি, সেখানেই ফিরে যাব৷’ 25 কিন্তু সেখানে ফিরে গিয়ে সে যখন দেখে সেই ঘরটি পরিষ্কার করা হয়েছে আর সাজানো-গোছানো আছে, 26 তখন সে গিয়ে তার থেকে আরো দুষ্ট সাতটা আত্মাকে নিয়ে এসে ঐ ঘরে বসবাস করতে থাকে৷ তাই ঐ লোকের প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরো ভয়ঙ্কর হয়৷’ 27 যীশু যখন এইসব কথা বলছিলেন, তখন সেই ভীড়ের মধ্য থেকে একজন স্ত্রীলোক চিত্কার করে বলে উঠল, ‘ধন্য সেই মা, যিনি আপনাকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন, আর য়াঁর স্তন আপনি পান করেছিলেন৷’ 28 কিন্তু যীশু বললেন, ‘এর থেকেও ধন্য তারা যাঁরা ঈশ্বরের শিক্ষা শোনে ও তা পালন করে৷’ 29 এরপর যখন ভীড় বাড়তে লাগল, তখন যীশু বললেন, ‘এ যুগের লোকেরা খুবই দুষ্ট, তারা কেবল অলৌকিক চিহ্নের খোঁজ করে৷ কিন্তু য়োনার চিহ্ন ছাড়া তাদেরকে আর কোন চিহ্ন দেখানো হবে না৷ 30 য়োনা য়েমন নীনবীয় লোকদের কাছে চিহ্নস্বরূপ হয়েছিলেন, তেমনি এই যুগের লোকদের কাছে মানবপুত্র হবেন৷ 31 দক্ষিণ দেশের রাণীবিচার দিনে উঠে এই যুগের লোকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন ও তাদের দোষী সাব্যস্ত করবেন৷ কারণ শলোমনের জ্ঞানের কথা শোনার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন, আর শলোমন এর থেকে মহান একজন এখন এখানে আছেন৷ 32 বিচার দিনে নীনবীয় লোকেরা এই যুগের লোকদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে, তারা এদের ওপর দোষারোপ করবে, কারণ তারা য়োনার প্রচার শুনে অনুশোচনা করেছিল, আর এখন য়োনার থেকে মহান একজন এখানে আছেন৷ 33 ‘প্রদীপ জে্বলে কেউ আড়ালে রাখে না বা ধামা চাপা দিয়ে রাখে না বরং তা বাতিদানের ওপরেই রাখে, য়েন যাঁরা ঘরে আসে, তারা আলো দেখতে পায়৷ 34 তোমার চোখ যদি সুস্থ থাকে, তবে তোমার সমস্ত দেহটি দীপ্তিময় হবে; কিন্তু তা যদি মন্দ হয় তবে তোমার দেহ অন্ধকারময় হবে৷ 35 তাই সাবধান, তোমার মধ্যে য়ে আলো আছে তা য়েন অন্ধকার না হয়৷ 36 তোমার সারা দেহ যদি আলোকময় হয়, তার মধ্যে যদি এতটুকু অন্ধকার না থাকে, তবে তা সম্পূর্ণ আলোকিত হবে, ঠিক য়েমন বাতির আলো তোমার ওপর পড়ে তোমায় আলোকিত করে তোলে৷’ 37 যীশু এই কথা শেষ করলে একজন ফরীশী তার বাড়িতে যীশুকে খাওযার জন্য নিমন্ত্রণ করল৷ তাই তিনি তার বাড়িতে গিয়ে খাবার আসনে বসলেন৷ 38 কিন্তু সেই ফরীশী দেখল য়ে খাওযার আগে প্রথা মতো যীশু হাত ধুলেন না৷ 39 প্রভু তাকে বললেন, ‘তোমরা ফরীশীরা থালা বাটির বাইরেটা পরিষ্কার কর, কিন্তু ভেতরে তোমরা দুষ্টতা ও লোভে ভরা৷ 40 তোমরা মূর্খের দল! তোমরা কি জান না যিনি বাইরেটা করেছেন তিনি ভেতরটাও করেছেন? 41 তাই তোমাদের থালা বাটির ভেতরে যা কিছু আছে তা দরিদ্রদের বিলিয়ে দাও, তাহলে সবকিছুই তোমাদের কাছে সম্পূর্ণ শুচি হয়ে যাবে৷ 42 কিন্তু হায়, ফরীশীরা ধিক্ তোমাদের কারণ তোমরা পুদিনা, ধনে ও বাগানের অন্যান্য শাকের দশমাংশ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করে থাক, কিন্তু ন্যায়বিচার ও ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের বিষয়টি অবহেলা কর৷ কিন্তু প্রথম বিষয়গুলির সঙ্গে সঙ্গে শেষেরগুলিও তোমাদের জীবনে পালন করা কর্তব্য৷ 43 ধিক্ ফরীশীরা! তোমরা সমাজ-গৃহে সম্মানিত আসন আর হাটে বাজারে সকলের সশ্রদ্ধ অভিবাদন পেতে কত না ভালবাস৷ 44 ধিক্ তোমাদের! তোমরা মাঠের মাঝে মিশে থাকা কবরের মতো, লোকেরা না জেনে যার ওপর দিয়ে হেঁটে যায়৷ 45 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক এর উত্তরে যীশুকে বললেন, ‘গুরু, আপনি এসব যা বললেন, তার দ্বারা আমাদেরও অপমান করলেন৷’ 46 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘হে ব্যবস্থার শিক্ষকরা, ধিক্ তোমাদের, তোমরা লোকদের ওপর এমন ভারী বোঝা চাপিয়ে দাও যা তাদের পক্ষে গ্রহণ করা অসন্ভব; আর তোমরা নিজেরা সেই ভার বইবার জন্য সাহায্য করতে তাতে একটা আঙ্গুল পর্যন্ত ছোঁযাও না৷ 47 ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা ভাববাদীদের সমাধিগুহা গেঁথে থাকো; আর এই সব ভাববাদীদের তোমাদের পূর্বপুরুষেরাই হত্যা করেছিল৷ 48 তাই এই কাজ করে তোমরা এই সাক্ষ্যই দিচ্ছ য়ে তোমাদের পূর্বপুরুষেরা য়ে কাজ করেছিল তা তোমরা ঠিক বলে মেনে নিচ্ছ৷ কারণ তারা ওদের হত্যা করেছিল আর তোমরা ওদের সমাধিগুহা রচনা করছ৷ 49 এই কারণেই ঈশ্বরের প্রজ্ঞা বলছে, ‘আমি তাদের কাছে য়ে ভাববাদী ও প্রেরিতদের পাঠাবো, তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে তারা হত্যা করবে, কাউকে বা নির্য়াতন করবে৷’ 50 সেই জন্যই জগত্ সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যত ভাববাদী হত্যা করা হয়েছে, তাদের সকলের হত্যার জন্য এই কালের লোকদের শাস্তি পেতে হবে৷ 51 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, হেবলের রক্তপাত থেকে আরন্ভ করে য়ে সখরিয়কে যজ্ঞবেদী ও মন্দিরের মধ্যবর্তী স্থানে হত্যা করা হয়েছিল, সেই সখরিয়ের হত্যা পর্যন্ত সমস্ত রক্তপাতের দায়ে দাযী হবে একালের লোকেরা৷ 52 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষকরা কারণ তোমরা জ্ঞানের চাবিটি ধরে আছ৷ তোমরা নিজেরাও প্রবেশ করনি আর যাঁরা প্রবেশ করার চেষ্টা করছে তাদেরও বাধা দিচ্ছ৷’ 53 তিনি যখন সেই জায়গা ছেড়ে চলে গেলেন, তখন ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা তাঁর বিরুদ্ধে ভীষণভাবে শত্রুতা করতে আরন্ভ করল এবং পরে তাঁকে নানাভাবে প্রশ্ন করতে থাকল৷ 54 তারা সুয়োগের অপেক্ষা করতে লাগল য়েন যীশু ভুল কিছু করলে তাই দিয়ে তাঁকে ধরতে পারে৷
1 এর মধ্যে হাজার হাজার লোক এসে জড়ো হল৷ প্রচণ্ড ভীড়ের চাপে ধাক্কা-ধাক্কি করে একে অপরের উপর পড়তে লাগল৷ তখন তিনি প্রথমে তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘ফরীশীদের খামির থেকে সাবধান থেকো৷ 2 এমন কিছুই লুকানো নেই যা প্রকাশ পাবে না, আর এমন কিছুই গুপ্ত নেই যা জানা যাবে না৷ 3 তাই তোমরা অন্ধকারে যা বলছ তা আলোতে শোনা যাবে৷ তোমরা গোপন কক্ষে ফিস্ফিস্করে কানে কানে যা বলবে তা বাড়ির ছাদের ওপর থেকে ঘোষণা করা হবে৷’ 4 কিন্তু হে আমার বন্ধুরা, ‘আমি তোমাদের বলছি, যাঁরা তোমাদের দেহটাকে ধ্বংস করে দিতে পারে, কিন্তু এর বেশী কিছু করতে পারে না তাদের তোমরা ভয় কোর না৷ 5 তবে কাকে ভয় করবে তা আমি তোমাদের বলে দিচ্ছি৷ তোমাদের মেরে ফেলার পর নরকে পাঠাবার ক্ষমতা য়াঁর আছে, তাঁকেই ভয় কর৷ হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, তাঁকেই ভয় কোর৷ 6 ‘পাঁচটা চড়াই পাখি কি মাত্র কয়েক পয়সায় বিক্রি হয় না? তবু ঈশ্বর তার একটাকেও ভুলে যান না৷ 7 এমন কি তোমাদের মাথার প্রতিটি চুল গোনা আছে৷ ভয় নেই, বহু চড়াই পাখির চেয়ে তোমাদের মূল্য অনেক বেশী৷ 8 ‘কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, য়ে কেউ অন্য লোকদের সামনে আমাকে স্বীকার করে, মানবপুত্রও ঈশ্বরের স্বর্গদূতদের সামনে তাকে স্বীকার করবেন৷ 9 কিন্তু য়ে কেউ সর্বসাধারণের সামনে আমায় অস্বীকার করবে, ঈশ্বরের স্বর্গদূতদের সামনে তাদের অস্বীকার করা হবে৷ 10 মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বললে তাকে ক্ষমা করা হবে; কিন্তু কেউ পবিত্র আত্মার নামে নিন্দা করলে তাকে ক্ষমা করা হবে না৷ 11 ‘তারা তখন তোমাদের সমাজ-গৃহের সমাবেশে শাসনকর্তাদের বা কর্ত্তৃত্ব সম্পন্ন ব্যক্তিদের সামনে হাজির করবে, তখন কিভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করবে বা কি বলবে তা নিয়ে চিন্তা কোর না৷ 12 কারণ সেই সময় কি বলতে হবে তা পবিত্র আত্মা তোমাদের সেইক্ষণেই শিখিয়ে দেবেন৷’ 13 এরপর সেই ভীড়ের মধ্য থেকে একজন লোক যীশুকে বলল, ‘গুরু, উত্তরাধিকার সূত্রে আমাদের য়ে সম্পত্তি রয়েছে তা আমার ভাইকে আমার সঙ্গে ভাগ করে নিতে বলুন৷’ 14 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘বিচারকর্তা হিসাবে কে তোমাদের ওপর আমায় নিযোগ করেছে?’ 15 এরপর যীশু লোকদের বললেন, ‘সাবধান! সমস্ত রকম লোক থেকে নিজেদের দূরে রাখ, কারণ মানুষের প্রযোজনের অতিরিক্ত সম্পত্তি থাকলেও তার জীবন তার সম্পত্তির ওপর নির্ভর করে না৷’ 16 তখন তিনি তাদের একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, ‘একজন ধনবান লোকের জমিতে প্রচুর ফসল হয়েছিল৷ 17 এই দেখে সে মনে মনে বলল, ‘আমি কি করব? এতো ফসল রাখার জায়গা তো আমার নেই৷’ 18 এরপর সে বলল, ‘আমি এই রকম করব; আমার য়ে গোলাঘরগুলো আছে তা ভেঙ্গে ফেলে তার থেকে বড় গোলাঘর বানাবো; আর সেখানেই আমার সমস্ত ফসল ও জিনিস মজুত করব৷ 19 আর আমার প্রাণকে বলব, হে প্রাণ, অনেক বছরের জন্য অনেক ভাল ভাল জিনিস তোমার জন্য সঞ্চয় করা হয়েছে৷ এখন আরাম করে খাও-দাও, স্ফূর্তি কর, 20 কিন্তু ঈশ্বর তাকে বললেন, ‘ওরে মূর্খ! আজ রাতেই তোমার প্রাণ কেড়ে নেওযা হবে; আর তুমি যা কিছু আযোজন করেছ তা কে ভোগ করবে?’ 21 ‘য়ে লোক নিজের জন্য ধন সঞ্চয় করে কিন্তু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধনবান নয়, তার এইরকম হয়৷’ 22 এরপর যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, ‘তাই আমি তোমাদের বলছি, কি খাব বলে প্রাণের বিষয়ে বা কি পরব বলে শরীরের বিষয়ে চিন্তা কোর না৷ 23 কারণ খাদ্য়বস্তু থেকে প্রাণ অনেক মূল্যবান এবং পোশাক-আশাকের থেকে দেহের গুরুত্ব অনেক বেশী৷ 24 কাকদের বিষয় চিন্তা কর, তারা বীজ বোনেও না বা ফসলও কাটেও না৷ তাদের কোন গুদাম বা গোলাঘর নেই, তবু ঈশ্বরই তাদের আহার য়োগান৷ এই সব পাখিদের থেকে তোমরা কত অধিক মূল্যবান! 25 তোমাদের মধ্যে কে দুশ্চিন্তা করে নিজের আযু এক ঘন্টা বাড়াতে পারে? 26 এই সামান্য কাজটাই যদি করতে না পার তবে বাকী সব বিষয়ের জন্য এত চিন্তা কর কেন? 27 ছোট্ট ছোট্ট লিলি ফুলের কথা চিন্তা কর দেখি, তারা কিভাবে বেড়ে ওঠে৷ তারা পরিশ্রমও করে না, সুতাও কাটেনা৷ তবু আমি তোমাদের বলছি, এমন কি রাজা শলোমন তাঁর সমস্ত প্রতাপ ও গৌরবে মণ্ডিত হয়েও এদের একটার মতোও নিজেকে সাজাতে পারেন নি৷ 28 মাঠে য়ে ঘাস আজ আছে আর কাল উনুনে ফেলে দেওযা হবে, ঈশ্বর তা যদি এত সুন্দর করে সাজান, তবে হে অল্প বিশ্বাসীর দল তিনি তোমাদের আরো কত না বেশী সাজাবেন! 29 আর কি খাবে বা কি পান করবে এ নিয়ে তোমরা চিন্তা কোর না, এর জন্য উদ্বিগ্ন হওযার কোন দরকার নেই৷ 30 এই পৃথিবীর আর সব জাতির লোকেরা যাঁরা ঈশ্বরকে জানে না, তারাই এই সবের পিছনে ছোটে৷ কিন্তু তোমাদের পিতা ঈশ্বর জানেন য়ে এসব জিনিস তোমাদের প্রযোজন আছে৷ 31 তার চেয়ে বরং তোমরা ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে সচেষ্ট হও তখন এসবই ঈশ্বর তোমাদের জোগাবেন৷ 32 ‘ক্ষুদ্র মেষপাল! তোমরা ভয় পেও না, কারণ তোমাদের পিতা আনন্দের সাথেই সেই রাজ্য তোমাদের দেবেন, এটাই তাঁর ইচ্ছা৷ 33 তোমাদের সম্পদ বিক্রি করে অভাবীদের দাও৷ নিজেদের জন্য এমন টাকার থলি তৈরী কর যা পুরানো হয় না, স্বর্গে এমন ধনসঞ্চয় কর যা শেষ হয় না, সেখানে চোর ঢুকতে পারে না বা মথ কাটে না৷ 34 কারণ য়েখানে তোমাদের সম্পদ সেখানেই তোমাদের মনও পড়ে থাকবে৷ 35 ‘তোমরা কোমর বেঁধে বাতি জ্বালিয়ে নিয়ে প্রস্তুত থাক৷ 36 তোমরা এমন লোকদের মতো হও যাঁরা তাদের মনিব বিয়ে বাড়ি থেকে কখন ফিরে আসবে তারই অপেক্ষায় থাকে; য়েন তিনি ফিরে এসে দরজায় কড়া নাড়লেই তখনই তাঁর জন্য দরজা খুলে দিতে পারে৷ 37 ধন্য সেই সব দাস, মনিব এসে যাদের জেগে প্রস্তুত থাকতে দেখবেন৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি নিজে পোশাক বদলে প্রস্তুত হয়ে তাদের খেতে বসাবেন, এবং নিজেই পরিবেশন করবেন৷ 38 তিনি রাতের দ্বিতীয় প্রহরে ও তৃতীয় প্রহরে এসে যদি তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে দেখেন তাহলে ধন্য তারা৷ 39 কিন্তু একথা জেনে রেখো, চোর কোন সময় আসবে তা যদি বাড়ির কর্তা জানতে পারে তাহলে সে তার বাড়িতে সিঁদ কাটতে দেবে না৷ 40 তাই তোমরাও প্রস্তুত থেকো, কারণ তোমরা য়ে সময় আশা করবে না, মানবপুত্র সেই সময় আসবেন৷ 41 তখন পিতর বললেন, ‘প্রভু এই দৃষ্টান্তটি কি আপনি শুধু আমাদের জন্য বললেন, না এটা সকলের জন্য?’ 42 তখন প্রভু বললেন, ‘সেই বিশ্বস্ত ও বিচক্ষণ কর্মচারী কে, যাকে তার মনিব তাঁর অন্য কর্মচারীদের সময়মতো খাবার ভাগ করে দেবার ভার দেবেন? 43 ধন্য সেই দাস, যাকে তার মনিব এসে বিশ্বস্তভাবে কাজ করতে দেখবেন৷ 44 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মনিব সেই কর্মচারীর ওপর তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার ভার দেবেন৷ 45 কিন্তু সেই কর্মচারী যদি মনে মনে বলে, ‘আমার মনিবের আসতে এখন অনেক দেরী আছে,’ এই মনে করে সে যদি তার অন্য দাস-দাসীদের মারধর করে আর পানাহারে মত্ত হয়, 46 তাহলে য়ে দিন ও য়ে সময়ের কথা সে একটুকু চিন্তাও করবে না, সেই দিন ও সেই সময়েই তার মনিব এসে হাজির হবেন৷ তার মনিব তাকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবেন; আর অবিশ্বাসীদের জন্য য়ে জায়গা ঠিক করা হয়েছে, তার স্থান সেখানেই হবে৷ 47 ‘য়ে দাস তার মনিবের ইচ্ছা জেনেও প্রস্তুত থাকে নি, অথবা য়ে তার মনিবের ইচ্ছানুসারে কাজ করে নি, সেই দাস কঠোর শাস্তি পাবে৷ 48 কিন্তু য়ে তার মনিব কি চায় তা জানে না, এই না জানার দরুন এমন কাজ করে ফেলেছে যার জন্য তার শাস্তি হওযা উচিত্, সেই দাসের কম শাস্তি হবে৷ যাকে বেশী দেওযা হয়েছে, তার কাছ থেকে বেশী পাবার আশা করা হবে৷ যার ওপর বেশী দাযিত্ব দেওযা হয়েছে, লোকেরা তার কাছ থেকে অধিক চাইবে৷’ 49 ‘আমি পৃথিবীতে আগুন নিক্ষেপ করতে এসেছি, ‘আহা, যদি তা আগেই জ্বলে উঠত৷ 50 এক বাপ্তিস্মে আমায় বাপ্তাইজিত হতে হবে, আর যতক্ষণ না তা হচ্ছে, আমি ব্যাকুল হয়ে উঠেছি৷ 51 তোমরা কি মনে কর এই পৃথিবীতে আমি শান্তি স্থাপন করতে এসেছি? না, আমি তোমাদের বলছি, বরং বিভেদ ঘটাতে এসেছি৷ 52 কারণ এখন থেকে একই পরিবারে পাঁচজন থাকলে তারা পরস্পরের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে৷ তিনজন দুজনের বিরুদ্ধে যাবে, আর দুজন তিনজনের বিরুদ্ধে যাবে৷ 53 বাবা ছেলের বিরুদ্ধে ও ছেলে বাবার বিরুদ্ধে যাবে৷ মা মেয়ের বিরুদ্ধে ও মেয়ে মায়ের বিরুদ্ধে যাবে৷ শাশুড়ী বৌমার বিরুদ্ধে ও বৌমা শাশুড়ীর বিরুদ্ধে যাবে৷’ 54 এরপর যীশু সমবেত জনতার দিকে ফিরে বললেন, ‘পশ্চিমদিকে মেঘ জমতে দেখে তোমরা বলে থাকো, ‘বৃষ্টি আসলো বলে, আর তা-ই হয়৷’ 55 যখন দক্ষিণা বাতাস বয়, তোমরা বলে থাক, ‘গরম পড়বে,’ আর তা-ই হয়৷ 56 ভণ্ডের দল! তোমরা পৃথিবী ও আকাশের চেহারা দেখে তার অর্থ বুঝতে পার; কিন্তু এ কেমন য়ে তোমরা বর্তমান সময়ের অর্থ বুঝতে পার না? 57 ‘যা কিছু ন্যায়, নিজেরাই কেন তার বিচার কর না? 58 তোমাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে তোমরা যখন বিচারকের কাছে যাও, তখন পথেই তা মিটিয়ে নেওযার চেষ্টা কর৷ নতুবা সে হয়তো তোমাকে বিচারকের কাছে টেনে নিয়ে যাবে, বিচারক তোমাকে সেপাইয়ের হাতে দেবে আর সেপাই তোমায় কারাগারে দেবে৷ 59 আমি তোমাকে বলছি, শেষ পয়সাটি না দেওযা পর্যন্ত তুমি কোন মতেই কারাগার থেকে ছাড়া পাবে না৷’
1 সেই সময় কয়েকজন লোক যীশুকে সেই সব গালীলীয়দের বিষয় বলল, ‘যাদের রক্ত রাজ্যপাল পীলাত তাদের উত্সর্গ করা বলির রক্তের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছিলেন৷ 2 যীশু এর উত্তরে বললেন, ‘তোমরা কি মনে কর এই গালীলীয়রা কষ্টভোগ করেছিল বলে অন্যান্য সব গালীলীয়দের থেকে বেশী পাপী ছিল? 3 না, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যদি পাপ থেকে মন না ফিরাও, তাহলে তোমরাও তাদের মত মরবে৷ 4 শীলোহ চূড়ো ভেঙ্গে পড়ে য়ে আঠারো জনের মৃত্যু হয়েছিল, তাদের বিষয়ে তোমাদের কি মনে হয়? তোমরা কি মনে কর জেরুশালেমের বাকী সব লোকদের থেকে তারা বেশী দোষে দোষী ছিল? 5 না, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যদি পাপ থেকে মন না ফিরাও, তাহলে তোমরাও তাদের মতো মরবে৷’ 6 এরপর যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি বললেন, ‘একজন লোক তার বাগানে একটি ডুমুর গাছ পুঁতেছিল৷ পরে সে এসে সেই গাছে ফল হয়েছে কি না খোঁজ করল, কিন্তু কোন ফল দেখতে পেল না৷ 7 তখন সে বাগানের মালীকে বলল, ‘দেখ, আজ তিন বছর ধরে এই ডুমুর গাছে ফলের খোঁজে আমি আসছি, কিন্তু আমি এতে কোন ফলই দেখতে পাচ্ছি না, তাই তুমি এই গাছটা কেটে ফেল, এটা অযথা জমি নষ্ট করবে কেন?’ 8 মালী তখন বলল, ‘প্রভু, এ বছরটা দেখতে দিন৷ আমি এর চারপাশে খুঁড়ে সার দিই৷ 9 সামনের বছর যদি এতে ফল আসে তো ভালোই! তা না হলে আপনি ওটাকে কেটে ফেলবেন৷ 10 কোন এক বিশ্রামবারে যীশু এক সমাজগৃহে শিক্ষা দিচ্ছিলেন৷ 11 সেখানে একজন স্ত্রীলোক ছিল যাকে এক দুষ্ট আত্মা আঠারো বছর ধরে পঙ্গু করে রেখেছিল৷ সে কুঁজো হয়ে গিয়েছিল, কোনরকমেও সোজা হতে পারত না৷ 12 যীশু তাকে দেখে কাছে ডাকলেন, এবং স্ত্রীলোকটিকে বললেন, ‘হে নারী, তোমার রোগ থেকে তুমি মুক্ত হলে!’ 13 এরপর তিনি তার ওপর হাত রাখলেন, সঙ্গে সঙ্গে সে সোজা হয়ে দাঁড়াল, আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ 14 যীশু তাকে বিশ্রামবারে সুস্থ করলেন বলে সেই সমাজগৃহের নেতা খুবই রেগে গিয়ে লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘সপ্তাহে দুদিন তো কাজ করার জন্য আছে, তাই ঐ সব দিনে এসে সুস্থ হও, বিশ্রামবারে এসো না৷’ 15 প্রভু এর উত্তরে তাঁকে বললেন, ‘ভণ্ডের দল! তোমরা কি বিশ্রামবারে গরু বা গাধা খোঁযাড় থেকে বের করে জল খাওযাতে নিয়ে যাও না? 16 এই স্ত্রীলোকটি, য়ে অব্রাহামের বংশে জন্মেছে, যাকে শয়তান আঠারো বছর ধরে বেঁধে রেখেছিল, বিশ্রামবার বলে কি সে সেই বাঁধন থেকে মুক্ত হবে না?’ 17 তিনি এই কথা বলাতে যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে ছিল তারা সকলেই খুব লজ্জা পেল; আর তিনি য়ে অপূর্ব কাজ করেছেন তার জন্য সমবেত জনতা আনন্দ করতে লাগল৷ 18 এরপর যীশু বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য কেমন, আমি কিসের সঙ্গে এর তুলনা করব? 19 এ হল একটা ছোট্ট সরষে বীজের মতো, যা একজন লোক নিয়ে তার বাগানে পুঁতল, আর তা থেকে অঙ্কুর বেরিয়ে সেটা বাড়তে লাগল, পরে সেটা একটা গাছে পরিণত হলে তার ডালপালাতে আকাশের পাখিরা এসে বাসা বাঁধল৷’ 20 তিনি আরও বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্যকে আমি কিসের সঙ্গে তুলনা করব? 21 এ হল খামিরের মতো, যা কোন একজন স্ত্রীলোক একতাল ময়দার সঙ্গে মেশাল, পরে সেই খামিরে সমস্ত তালটা ফুলে উঠল৷’ 22 যীশু বিভিন্ন নগর ও গ্রামের মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে শিক্ষা দিচ্ছিলেন, এইভাবে তিনি জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন৷ 23 কোন একজন লোক তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘প্রভু উদ্ধার কি কেবল অল্প কয়েকজন লোকই পাবে?’তিনি তাদের বললেন, 24 ‘সরু দরজা দিয়ে ঢোকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর, কারণ আমি তোমাদের বলছি, অনেকেই ঢোকার চেষ্টা করবে; কিন্তু ঢুকতে পারবে না৷ 25 ঘরের কর্তা উঠে যখন দরজা বন্ধ করবেন, তখন তোমরা বাইরে দাঁড়িয়ে দরজায় ঘা দিতে দিতে বলবে, ‘প্রভু আমাদের জন্য দরজা খুলে দিন৷’ কিন্তু তিনি তোমাদের বলবেন, ‘তোমরা কোথা থেকে এসেছ; আমি জানি না৷ 26 তারপর তোমরা বলতে থাকবে, ‘আমরা আপনার সঙ্গে খাওযা দাওযা করেছি; আর আপনি তো আমাদের পথে পথে উপদেশ দিয়েছেন৷’ 27 তখন তিনি তোমাদের বলবেন, ‘তোমরা কোথা থেকে এসেছ, আমি জানি না৷ তোমরা সব দুষ্টের দল, আমার কাছ থেকে দূর হও৷’ 28 তোমরা যখন দেখবে য়ে অব্রাহাম, ইসহাক, যাকোব ও সব ভাববাদীরা ঈশ্বরের রাজ্যে আছেন; কিন্তু তোমাদের বাইরে ফেলে দেওযা হয়েছে, তখন কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘসতে থাকবে; 29 আর লোকেরা উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম থেকে এসে ঈশ্বরের রাজ্যে নিজের নিজের আসন গ্রহণ করবে৷ 30 মনে রেখো, যাঁরা আজ শেষে রয়েছে, তারা প্রথমে স্থান নেবে, আর যাঁরা আজ প্রথমে রয়েছে, তারা শেষের হবে৷’ 31 সেই সময় কয়েকজন ফরীশী যীশুর কাছে এসে বললেন, ‘তুমি এখান থেকে অন্য কোথাও যাও! কারণ হেরোদ তোমায় হত্যা করতে চাইছে৷’ 32 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা গিয়ে সেই শিযালটাকেবল, ‘আমি আজ ও কাল ভূত ছাড়াবো ও রোগীদের সুস্থ করব, আর তৃতীয় দিনে আমি আমার কাজ শেষ করব৷’ 33 আমি আমার পথে চলতেই থাকব, কারণ জেরুশালেমের বাইরে কোন ভাববাদী প্রাণ হারাবে তেমনটি হতে পারে না৷ 34 ‘জেরুশালেম, হায় জেরুশালেম! তুমি ভাববাদীদের হত্যা করেছ; আর ঈশ্বর তোমার কাছে যাদের পাঠিয়েছেন তুমি তাদের পাথর মেরেছ! মুরগী য়েমন তার বাচ্চাদের নিজের ডানার নীচে জড়ো করে, তেমনি আমি কতবার তোমার লোকদের আমার কাছে জড়ো করতে চেয়েছি৷ কিন্তু তুমি রাজী হও নি৷ 35 এইজন্য দেখ তোমাদের গৃহ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকবে৷ আমি তোমাদের বলছি, যতদিন না তোমরা বলবে, ‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন, ততদিন তোমরা আমায় আর দেখতে পাবে না৷’
1 এক বিশ্রামবারে যীশু ফরীশীদের একজন নেতৃস্থানীয় লোকের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে গেলেন৷ সেখানে সমবেত লোকেরা যীশুর প্রতি লক্ষ্য রাখছিল৷ 2 যীশুর সামনে একটি লোক ছিল য়ে উদরী রোগে ভুগছিল৷ 3 যীশু তখন ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বিশ্রামবারে কাউকে সুস্থ করা কি বিধিসম্মত?’ 4 কিন্তু তারা সকলে চুপ করে রইল৷ তখন যীশু সেই অসুস্থ লোকটিকে ধরে তাকে সুস্থ করলেন, পরে বিদায় নিলেন৷ 5 এরপর তিনি তাদের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে কারোর সন্তান বা গরু যদি বিশ্রামবারে কুয়ায় পড়ে যায় তাহলে তোমরা কি সঙ্গে সঙ্গে তাকে সেখান থেকে টেনে তুলবে না?’ 6 তারা কেউ এই কথার জবাব দিতে পারল না৷ 7 যীশু দেখলেন নিমন্ত্রিত অতিথিরা কিভাবে নিজেরাই ভোজের শ্রেষ্ঠ আসন দখল করার চেষ্টা করছে৷ তাই তিনি তাদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি নিয়ে বললেন, 8 ‘বিয়ের ভোজে যখন কেউ তোমাদের নিমন্ত্রণ করে তখন সেখানে গিয়ে সম্মানের আসনটা দখল করে বসবে না৷ কারণ তোমার চেয়ে হয়তো আরো সম্মানিত কাউকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে৷ 9 তা করলে যিনি তোমাদের উভয়কেই নিমন্ত্রণ করেছেন, তিনি এসে তোমায় বলবেন, ‘এঁকে তোমার জায়গাটা ছেড়ে দাও!’ তখন তুমি লজ্জায় পড়বে, কারণ তোমাকে সবচেয়ে নীচু জায়গায় বসতে হবে৷ 10 কিন্তু তুমি যখন নিমন্ত্রিত হয়ে যাও, সেখানে গিয়ে সবচেয়ে নীচু জায়গায় বসবে৷ যিনি তোমায় নিমন্ত্রণ করেছেন তিনি এসে এরকম দেখে তোমায় বলবেন, ‘বন্ধু এস, এই ভাল আসনে বস৷’ তখন নিমন্ত্রিত অন্য সব অতিথিদের সামনে তোমার সম্মান হবে৷ 11 য়ে কেউ নিজেকে সম্মান দিতে চায় তাকে নত করা হবে, আর য়ে নিজেকে নত করে তাকে সম্মানিত করা হবে৷’ 12 তখন য়ে তাঁকে নিমন্ত্রণ করেছিল, তাকে যীশু বললেন, ‘তুমি যখন ভোজের আযোজন করবে তখন তোমার বন্ধু, ভাই, আত্মীয়স্বজন বা ধনী প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ কোর না, কারণ তারা তোমাকে পাল্টা নিমন্ত্রণ করে প্রতিদান দেবে৷ 13 কিন্তু তুমি যখন ভোজের আযোজন করবে তখন দরিদ্র, খোঁড়া, বিকলাঙ্গ ও অন্ধদের নিমন্ত্রণ কোর৷ 14 তাতে যাদের প্রতিদান দেবার ক্ষমতা নেই, সেই রকম লোকদের নিমন্ত্রণ করার জন্য ধার্মিকদের পুনরুত্থানের সময় ঈশ্বর তোমায় পুরস্কার দেবেন৷’ 15 যাঁরা খেতে বসেছিল তাদের মধ্যে একজন এই কথা শুনে যীশুকে বলল, ‘ঈশ্বরের রাজ্যে যাঁরা খেতে বসবে তারা সকলে ধন্য৷’ 16 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘একজন লোক এক বিরাট ভোজের আযোজন করেছিল আর সে অনেক লোককে নিমন্ত্রণ করেছিল৷ 17 ভোজ খাওযার সময় হলে সে তার দাসকে দিয়ে নিমন্ত্রিত লোকদের বলে পাঠাল, ‘তোমরা এস! কারণ এখন সবকিছু প্রস্তুত হয়েছে! 18 তারা সকলেই নানা অজুহাত দেখাতে শুরু করল৷ প্রথম জন তাকে বলল, ‘আমায় মাপ কর, কারণ আমি একটা ক্ষেত কিনেছি, তা এখন আমায় দেখতে য়েতে হবে৷’ 19 আর একজন বলল, ‘আমি পাঁচ জোড়া বলদ কিনেছি, এখন সেগুলি একটু পরখ করে নিতে চাই, তাই আমি য়েতে পারব না আমায় মাপ কর৷’ 20 এরপর আর একজন বলল, ‘আমি সবে মাত্র বিয়ে করেছি, সেই কারণে আমি আসতে পারব না৷’ 21 সেই দাস ফিরে গিয়ে তার মনিবকে একথা জানালে, তার মনিব রেগে গিয়ে তার দাসকে বলল, ‘যাও, শহরের পথে পথে, অলিতে গলিতে গিয়ে গরীব, খোঁড়া, পঙ্গু ও অন্ধদের ডেকে নিয়ে এস৷’ 22 এরপর সেই দাস মনিবকে বলল, ‘প্রভু, আপনি যা যা বলেছেন তা করেছি, তা সত্ত্বেও এখনও অনেক জায়গা আছে৷ 23 তখন মনিব সেই দাসকে বলল, ‘এবার তুমি গ্রামের পথে পথে, বেড়ার ধারে ধারে যাও, যাকে পাও তাকেই এখানে আসবার জন্য জোর কর, য়েন আমার বাড়ি ভরে যায়৷ 24 আমি তোমাদের বলছি, যাদের প্রথমে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল, তাদের কেউই আমার এই ভোজের স্বাদ পাবে না!” 25 যীশুর সঙ্গে সঙ্গে এক বিরাট জনতা চলেছিল, তাদের দিকে ফিরে যীশু বললেন, 26 ‘যদি কেউ আমার কাছে আসে অথচ তার বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোন, এমন কি নিজের প্রাণকেও আমার চেয়ে বেশী ভালবাসে সে আমার শিষ্য হতে পারবে না৷ 27 য়ে কেউ নিজের ক্রুশ কাঁধে তুলে নিয়ে আমায় অনুসরণ না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না৷ 28 তোমাদের মধ্যে কেউ যদি উঁচু একটি ঘর তুলতে চায়, তবে সে কি প্রথমে তা নির্মাণ করতে কত খরচ পড়বে তার হিসাব করে দেখবে না, য়ে তা শেষ করার মতো যথেষ্ট অর্থ তার আছে কি না? 29 তা না হলে সে ভিত গাঁথবার পর যদি তা শেষ করতে না পারে, তবে যাঁরা সেটা দেখবে তারা সবাই তাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে, আর বলবে, 30 এই লোকটা গাঁথতে শুরু করেছিল ঠিকই কিন্তু শেষ করতে পারল না৷’ 31 ‘যদি একজন রাজা আর একজন রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যায়, তবে সে প্রথমে বসে চিন্তা করবে না য়ে তার মাত্র দশ হাজার সৈন্য বিপক্ষের বিশ হাজার সৈন্য়ের মোকাবিলা করতে পারবে কিনা? 32 যদি তা না পারে তবে তার শত্রু পক্ষ দূরে থাকতেই সে তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে সন্ধির প্রস্তাব দেবে৷ 33 ঠিক সেইরকমভাবে তোমাদের মধ্যে য়ে কেউ তার সর্বস্ব ত্যাগ না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না৷’ 34 ‘লবণ ভাল, তবে লবণের নোনতা স্বাদ যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তা কি আবার নোনতা করা যায়? 35 তখন তা না জমির জন্য, না সারের গাদার জন্য উপযুক্ত থাকে, লোকে তা বাইরেই ফেলে দেয়৷‘যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক৷’
1 অনেক কর আদায়কারী ও পাপী লোকেরা প্রায়ই যীশুর কথা শোনার জন্য আসত৷ 2 এতে ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা এই বলে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে লাগল, ‘এই লোকটা জঘন্য পাপী লোকদের সঙ্গে মেলামেশা ও খাওযা দাওযা করে৷’ 3 তখন যীশু তাদের কাছে এই দৃষ্টান্ত দিলেন, 4 ‘যদি তোমাদের মধ্যে কারোর একশোটি ভেড়া থাকে, তার মধ্যে থেকে একটা হারিয়ে যায়, তবে সে কি মাঠের মধ্যে বাকি নিরানব্বইটা রেখে য়েটা হারিয়ে গেছে তাকে না পাওযা পর্যন্ত তার খোঁজ করবে না? 5 আর যখন সে ঐ ভেড়াটাকে খুঁজে পায়, তখন তাকে আনন্দের সঙ্গে কাঁধে তুলে নেয়৷ 6 তারপর বাড়ি এসে তার বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের ডেকে বলে, ‘এস, আমার সঙ্গে তোমরাও আনন্দ কর, কারণ আমার য়ে ভেড়াটা হারিয়ে গিয়েছিল তাকে আমি খুঁজে পেয়েছি৷’ 7 আমি তোমাদের বলছি, ঠিক সেইভাবে নিরানব্বই জন ধার্মিক, যাদের মন পরিবর্তনের প্রযোজন নেই তাদের থেকে একজন পাপী যদি ঈশ্বরের কাছে মন ফিরায়, তাকে নিয়ে স্বর্গে মহানন্দ হয়৷ 8 ধর, কোন একজন স্ত্রীলোকের দশটা রূপোর সিকির একটা হার ছিল৷ তার মধ্য থেকে সে যদি একটা হারিয়ে ফেলে, তাহলে সে কি প্রদীপ জ্বেলে সেই সিকিটি না পাওযা পর্যন্ত ঘরের প্রতিটি জায়গা ভাল করে ঝাঁট দিয়ে খুঁজে দেখবে না?’ 9 আর সে তা খুঁজে পেলে তার বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের ডেকে বলবে, ‘এস, আমার সঙ্গে আনন্দ কর, কারণ আমার য়ে সিকিটি হারিয়ে গিয়েছিল তা আমি খুঁজে পেয়েছি৷’ 10 আমি তোমাদের বলছি, ঠিক এইভাবে একজন পাপী যখন মন-ফিরায়, তখন ঈশ্বরের স্বর্গদূতদের সামনে আনন্দ হয়৷’ 11 এরপর যীশু বললেন, ‘একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল৷ 12 ছোট ছেলেটি তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, সম্পত্তির য়ে অংশ আমার ভাগে পড়বে তা আমায় দিয়ে দাও৷’ তখন বাবা দুই ছেলের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করে দিলেন৷ 13 কিছু দিন পর ছোট ছেলে তার সমস্ত কিছু নিয়ে দূর দেশে চলে গেল৷ সেখানে সে উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করে সমস্ত টাকা পয়সা উড়িয়ে দিল৷ 14 তার সব টাকা পয়সা খরচ হয়ে গেলে সেই দেশে ভীষণ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল আর সেও অভাবে পড়ল৷ 15 তাই সে সেই দেশের এক ব্যক্তির কাছে দিন মজুরীর একটা কাজ চাইল৷ সেই ব্যক্তি তাকে তার শুযোর চরাবার জন্য মাঠে পাঠিয়ে দিল৷ 16 শুযোর য়ে শুঁটি খায় তা খেয়ে সে তার পেট ভরাতে চাইত, কিন্তু কেউ তাকে তাও দিত না৷ 17 শেষ পর্যন্ত একদিন তার চেতনা হল, আর সে বলল, ‘আমার বাবার কাছে কত মজুর পেট ভরে খেতে পায় আর এখানে আমি খিদের জ্বালায় মরছি৷ 18 আমি উঠে আমার বাবার কাছে যাব, তাকে বলব, বাবা, আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ও তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় পাপ করেছি৷ 19 তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেবার কোন য়োগ্যতা আর আমার নেই৷ তোমার চাকরদের একজনের মতো করে তুমি আমায় রাখ!’ 20 এরপর সে উঠে তার বাবার কাছে গেল৷‘সে যখন বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে আছে, এমন সময় তার বাবা তাকে দেখতে পেলেন, বাবার অন্তর দুঃখে ভরে গেল৷ বাবা দৌড়ে গিয়ে ছেলের গলা জড়িয়ে ধরে তাকে চুমু খেলেন৷ 21 ছেলে তখন তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, আমি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ও তোমার কাছে অন্যায় পাপ করেছি৷ তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেবার য়োগ্যতা আমার নেই৷ 22 কিন্তু তার বাবা চাকরদের ডেকে বললেন, ‘তাড়াতাড়ি কর, সব থেকে ভাল জামাটা নিয়ে এসে একে পরিয়ে দাও৷ এর হাতে আংটি ও পায়ে জুতো পরিয়ে দাও৷ 23 হৃষ্টপুষ্ট একটা বাছুর নিয়ে এসে সেটা কাট, আর এস, আমর সবাই মিলে খাওযা দাওযা করি, আনন্দ করি! 24 কারণ আমার এই ছেলেটা মারা গিয়েছিল আর এখন সে জীবন ফিরে পেয়েছে! সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন তাকে খুঁজে পাওযা গেছে৷’এই বলে তারা সকলে আনন্দ করতে লাগল৷ 25 ‘সেই সময় তাঁর বড় ছেলে মাঠে ছিল৷ বাড়ির কাছাকাছি এসে সে বাজনা আর নাচের শব্দ শুনতে পেল৷ 26 তখন সে একজন চাকরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করল, ‘কি ব্যাপার, এসব কি হচ্ছে?’ 27 চাকরটি বলল, ‘আপনার ভাই এসেছে, আর সে সুস্থ শরীরে নিরাপদে ফিরে এসেছে বলে আপনার বাবা হৃষ্টপুষ্ট বাছুর কেটে ভোজের আযোজন করেছেন৷’ 28 এই শুনে বড় ছেলে খুব রেগে গেল, সে বাড়ির ভেতরে য়েতে চাইল না৷ তখন তার বাবা বেরিয়ে এসে তাকে সান্ত্বনা দিলেন৷ 29 কিন্তু সে তার বাবাকে বলল, ‘দেখ, এত বছর ধরে আমি তোমাদের সেবা করেছি, কখনও তোমার কথার অবাধ্য হই নি৷ তবু আমার বন্ধুদের সঙ্গে একটু আমোদ করার জন্য তুমি আমায় কখনও একটা ছাগলও দাও নি৷ 30 কিন্তু তোমার এই ছেলে য়ে বেশ্যাদের পেছনে তোমার টাকা উড়িয়ে দিয়েছে, সে যখন এল তখন তুমি তার জন্য হৃষ্টপুষ্ট বাছুর কাটলে৷’ 31 তার বাবা তাকে বললেন, ‘বাছা, তুমি তো সব সময় আমার সঙ্গে সঙ্গে আছ; আর আমার যা কিছু আছে সবই তো তোমার৷ 32 কিন্তু আমাদের আনন্দিত হয়ে উত্সব করা উচিত, কারণ তোমার এই ভাই মরে গিয়েছিল আর এখন সে জীবন ফিরে পেয়েছে৷ সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন তাঁকে খুঁজে পাওযা গেছে৷’
1 এরপর যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, ‘কোন একজন ধনী ব্যক্তির একজন দেওযান ছিল; আর এই দেওযান তার মনিবের সম্পদ নষ্ট করছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল৷ 2 তখন সেই ধনী ব্যক্তি ঐ দেওযানকে ডেকে বললেন, ‘তোমার বিষয়ে আমি এ কি শুনছি? তোমার কাজের হিসাব আমায় দাও, কারণ তুমি আর আমার দেওযান থাকতে পারবে না৷’ 3 তখন সেই দেওযান মনে মনে বলল, ‘এখন আমি কি করব? আমার মনিব তো আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন৷ আমি য়ে মজুরের কাজ করে খাব তার ক্ষমতাও আমার নেই, আর ভিক্ষা করতেও আমার লজ্জা লাগে৷ 4 আমার দেওযানী পদ গেলেও লোকে যাতে তাদের বাড়িতে আমায় থাকতে দেয় সে জন্য আমায় কি করতে হবে তা আমি জানি৷’ 5 তখন তার মনিবের কাছে যাঁরা ধারে জিনিস নিয়েছিল তাদের প্রত্যেককে সে ডেকে তাদের প্রথম জনকে বলল, ‘আমার মনিবের কাছে তুমি কত ধার?’ 6 সে বলল, ‘একশো মন অলিভ তেল৷’ তখন সেই দেওযান তাকে বলল, ‘এই নাও তোমার হিসাবের কাগজটা, তাড়াতাড়ি করে লেখ, পঞ্চাশ মন৷’ 7 এরপর আর একজন লোককে সে বলল, ‘আর তুমি, তুমি কত ধার?’ সে বলল, ‘একশো মন গম৷’ সেই দেওযান তাকে বলল, ‘তোমার রসিদটা দেখি, এটাতে আশি মন লেখ৷’ 8 সেই মনিব তাঁর অসত্ দেওযানের প্রশংসা করলেন, কারণ সে বুদ্ধিমানের মত কাজ করেছিল৷ এ জগতের লোকেরা নিজেদের মত লোকেদের সঙ্গে আচার আচরণে জ্যোতির সন্তানদের থেকে বেশী বিচক্ষণ৷ 9 ‘আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের জাগতিক সম্পদ দিয়ে নিজেদের জন্য বন্ধু লাভ কর, য়েন যখন তা শেষ হয়ে যাবে, তখন তারা তোমাদের অনন্ত আবাসে স্বাগত জানায়৷ 10 য়ে সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত হতে পারে, বড় ব্যাপারেও তাকে বিশ্বাস করা চলে৷ য়ে ছোটখাটো বিষয়ে অবিশ্বস্ত, সে বড় বড় বিষয়েও অবিশ্বস্ত হবে৷ 11 তাই জাগতিক সম্পদ সম্বন্ধে তুমি যদি বিশ্বস্ত না হও, তবে প্রকৃত সত্য সম্পদের বিষয়ে কে তোমাকে বিশ্বাস করবে৷ 12 অপরের জিনিসের ব্যাপারে তোমাদের যদি বিশ্বাস করা না যায়, তবে তোমাদের যা নিজস্ব সম্পদ তাই বা কে তোমাদের দেবে? 13 ‘কোন দাস দুজন কর্তার দাসত্ব করতে পারে না, হয় সে একজনকে ঘৃণা করবে ও অন্যজনকে ভালবাসবে, অথবা একজনের অনুগত হয়ে অন্য জনকে তুচ্ছ করবে৷ তোমরা ঈশ্বর ও ধন-সম্পদ উভয়েরই দাসত্ব করতে পার না৷’ 14 অর্থলোভী ফরীশীরা যীশুর এই সব কথা শুনে যীশুকে ব্যঙ্গ করতে লাগল৷ 15 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা সেই রকম লোক, যাঁরা লোকচক্ষে নিজেদের খুব ধার্মিক বলে জাহির করে থাকে, কিন্তু তোমাদের অন্তরে কি আছে ঈশ্বর তা জানেন৷ মানুষের চোখে যা মহান, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তা ঘৃন্য৷ 16 ‘য়োহন বাপ্তাইজকের সময় পর্যন্ত বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষার প্রচলন ছিল৷ তারপর থেকে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় সুসমাচার প্রচার করা শুরু হয়েছে৷ আর সেই রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য সবাই প্রবলভাবে চেষ্টা করছে৷ 17 তবে বিধি-ব্যবস্থার এক বিন্দু বাদ পড়ার চেয়ে বরং আকাশ ও পৃথিবীর লোপ পাওযা সহজ৷ 18 ‘য়ে কেউ নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে, সে ব্যভিচার করে; আর য়ে সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করে সেও, ব্যভিচার করে৷’ 19 ‘এক সময় একজন ধনী ব্যক্তি ছিল, সে বেগুনী রঙের কাপড় ও বহুমূল্য পোশাক পরত; আর প্রতিদিন বিলাসে দিন কাটাতো৷ 20 তারই দরজার সামনে লাসার নামে একজন ভিখারী পড়ে থাকত, যার সারা শরীর ঘায়ে ভরে গিয়েছিল৷ 21 সেই ধনী ব্যক্তির টেবিল থেকে টুকরো-টাকরা য়ে খাবার পড়ত তাই খেয়ে সে পেট ভরাবার আশায় থাকত, এমনকি কুকুররা এসে তার ঘা চেটে দিত৷ 22 একদিন সেই গরীব ভিখারী মারা গেল, আর স্বর্গদূতেরা এসে তাকে নিয়ে গেল এবং সে অব্রাহামের কোলে স্থান পেল৷ সেই ধনী ব্যক্তি ও একদিন মারা গেল, আর তাকে সমাধি দেওযা হল৷ 23 সেই ধনী ব্যক্তি পাতালে নরকে খুব যন্ত্রণার মধ্যে কাটাতে থাকল৷ এই অবস্থায় সে মুখ তুলে তাকাতে বহুদূরে অব্রাহামকে দেখতে পেল; আর অব্রাহামের কোলে সেই লাসারকে দেখতে পেল৷ 24 সেই ধনী ব্যক্তি তখন চিত্কার করে বলে উঠল, ‘হে পিতা, অব্রাহাম, আমার প্রতি দযা করুন, লাসারকে এখানে পাঠিয়ে দিন, য়েন সে এখানে এসে ওর আঙ্গুলের ডগা জলে ডুবিয়ে আমার জিভ জুড়িয়ে দেয়, কারণ আমি এই আগুনের মধ্যে বড়ই কষ্ট পাচ্ছি!’ 25 কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘হে আমার বত্স, মনে করে দেখ, জীবনে সুখের সব কিছুই তুমি ভোগ করেছ আর সেই সময় লাসার অনেক কষ্ট পেয়েছে৷ কিন্তু এখন এখানে সে সুখ পাচ্ছে আর তুমি কষ্ট পাচ্ছ৷ 26 এছাড়া তোমাদের ও আমাদের মাঝে এক মহাশূন্য স্থান আছে, যাতে ইচ্ছা থাকলেও কেউ এখানে থেকে পার হয়ে তোমাদের কাছে য়েতে না পারে, আর ওখান থেকে পার হয়ে কেউ আমাদের কাছে আসতে না পারে৷’ 27 সেই ধনী ব্যক্তি তখন বলল, ‘তাহলে পিতা দযা করে লাসারকে আমার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিন! 28 য়েন আমার য়ে পাঁচ ভাই সেখানে আছে, তাদের সে সাবধান করে দেয়, যাতে তারা এই যন্ত্রণার জায়গায় না আসে৷’ 29 কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘মোশি ও অন্যান্য ভাববাদীরা তো তাদের জন্য আছেন, তাঁদের কথা তারা শুনুক৷’ 30 তখন ধনী লোকটি বলল, ‘না, না, পিতা অব্রাহাম মৃতদের মধ্য থেকে কেউ যদি তাদের কাছে যায়, তবে তারা অনুতাপ করবে৷’ 31 অব্রাহাম তাকে বললেন, ‘তারা যদি মোশি ও ভাববাদীদের কথা না শোনে, তবে মৃতদের মধ্য থেকে উঠে গিয়েও যদি কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলে তবু তারা তা শুনবে না৷’
1 যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, ‘পাপের প্রলোভন সব সময়ই থাকবে, কিন্তু ধিক্ সেই লোক যার মাধ্যমে তা আসে৷ 2 এই ক্ষুদ্রতমদের মধ্যে একজনকেও কেউ যদি পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে তার গলায় এক পট্টি জাঁতা বেঁধে তাকে সমুদ্রের অতল জলে ডুবিয়ে দেওযা তার পক্ষে ভাল৷ 3 তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান!‘তোমার ভাই যদি পাপ করে, তাকে তিরস্কার কর৷ সে যদি অনুতপ্ত হয় তবে তাকে ক্ষমা কর৷ 4 সে যদি এক দিনে সাতবার তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, আর সাতবারই তোমার কাছে ফিরে এসে বলে, ‘আমি অনুতপ্ত,’ তবে তাকে ক্ষমা কর৷’ 5 এরপর প্রেরিতেরা প্রভুকে বললেন, ‘আমাদের বিশ্বাসের বৃদ্ধি করুন!’ 6 প্রভু বললেন, ‘একটা সরষে দানার মতো এতটুকু বিশ্বাস যদি তোমাদের থাকে, তাহলে এই তুঁত গাছটাকে তোমরা বলতে পার, ‘শেকড়শুদ্ধ উপড়ে নিয়ে সমুদ্রে নিজেকে পোঁত!’ আর দেখবে সে তোমাদের কথা শুনবে৷ 7 ‘ধর তোমাদের মধ্যে কারো একজনের দাস হাল চষছে বা ভেড়া চরাচ্ছে৷ সে যখন মাঠ থেকে আসে তখন তুমি কি তাকে বলবে, ‘তাড়াতাড়ি করে এস, খেতে বস?’ 8 বরং তাকে কি বলবে না, ‘আমি কি খাব তার জোগাড় কর, আর আমি যতক্ষণ খাওযা-দাওযা করি, তুমি কোমরে গামছা জড়িয়ে আমার সেবা যত্ন কর, এরপর তুমি খাওযা-দাওযা করবে৷’ 9 ঐ দাস তোমার হুকুম অনুসারে কাজ করল বলে কি তুমি তাকে ধন্যবাদ দেবে? 10 তোমাদের ক্ষেত্রে সেই একই কথা প্রয়োজ্য৷ তোমাদের য়ে কাজ করতে বলা হয়েছে তা করা শেষ হলে তোমরা বলবে, ‘আমরা অয়োগ্য দাস, আমরা আমাদের কর্তব্য করেছি৷” 11 যীশু জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছিলেন, যাবার পথে তিনি গালীল ও শমরীযার মাঝখান দিয়ে গেলেন৷ 12 তাঁরা যখন একটি গ্রামে ঢুকছেন, এমন সময় দশ জন কুষ্ঠরোগী তাঁর সামনে পড়ল, তারা একটু দূরে দাঁড়াল, 13 ও চিত্কার করে বলল, ‘প্রভু যীশু! আমাদের দযা করুন!’ 14 তাদের দেখে যীশু বললেন, ‘যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও৷’পথে য়েতে য়েতে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল; 15 কিন্তু তাদের মধ্যে একজন যখন দেখল য়ে সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে তখন যীশুর কাছে ফিরে এসে খুব জোর গলায় ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ 16 সে যীশুর সামনে উপুড় হয়ে পড়ে তাঁকে ধন্যবাদ জানাল৷ এই লোকটি ছিল অইহুদী শমরীয়৷ 17 এই দেখে যীশু তাকে বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে দশ জনই কি আরোগ্য লাভ করেনি? তবে বাকী নজন কোথায়? 18 ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য এই ভিন্ন জাতের লোকটি ছাড়া আর কেউ কি ফিরে আসেনি?’ 19 এরপর যীশু সেই লোকটিকে বললেন, ‘ওঠ, যাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করে তুলেছে৷’ 20 একসময় ফরীশীরা যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য কখন আসবে?’যীশু তাদের বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য এমনভাবে আসে, যা চোখে দেখা যায় না৷ 21 লোকেরা বলবে না য়ে, ‘এই য়ে এখানে ঈশ্বরের রাজ্য’ বা ‘ওই য়ে ওখানে ঈশ্বরের রাজ্য৷’ কারণ ঈশ্বরের রাজ্য তো তোমাদের মাঝেই আছে৷’ 22 কিন্তু অনুগামীদের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, ‘সময় আসবে, যখন মানবপুত্রের রাজত্বের সময়ের একটা দিন তোমরা দেখতে চাইবে, কিন্তু তোমরা তা দেখতে পাবে না৷ 23 লোকেরা তোমাদের বলবে, ‘দেখ, তা ওখানে! বা দেখ তা এখানে!’ তাদের কথা শুনে য়েও না, বা তাদের পেছনে দৌড়িও না৷ 24 ‘কারণ বিদ্যুত্ চমকালে আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত য়েমন আলো হয়ে যায়, মানবপুত্রের দিনে তিনি সেইরকম হবেন৷ 25 কিন্তু প্রথমে তাঁকে অনেক দুঃখভোগ করতে হবে, তাছাড়া এই যুগের লোকেরা তাঁকে অগ্রাহ্য় করবে৷ 26 নোহের সময়ে য়েমন হয়েছিল, মানবপুত্রের সময়েও তেমনি হবে৷ 27 য়ে পর্যন্ত না নোহ জাহাজে উঠলেন আর বন্যা এসে লোকদের ধ্বংস করল, সেই সময় পর্যন্ত লোকেরা খাওযা দাওযা করছিল, বিয়ে করছিল ও বিয়ে দিচ্ছিল৷ 28 লোটের সময়েও সেই একই রকম হয়েছিল৷ তারা খাওযা-দাওযা করছিল, কেনা-বেচা, চাষ-বাস, গৃহ নির্মাণ সবই করত৷ 29 কিন্তু লোট য়ে দিন সদোম থেকে বেরিয়ে এলেন, তারপরেই আকাশ থেকে আগুন ও গন্ধক বর্ষিত হয়ে সেখানকার সব লোককে ধ্বংস করে দিল৷ 30 য়ে দিন মানবপুত্র প্রকাশিত হবেন, সেদিন এই রকমই হবে৷ 31 ‘সেই দিন কেউ যদি ছাদের উপর থাকে, আর তার জিনিস পত্র যদি ঘরের মধ্যে থাকে, তবে সে তা নেবার জন্য য়েন নীচে না নামে৷ তেমনি যদি কেউ ক্ষেতের কাজে থাকে, তবে সে কোন কিছু নিতে ফিরে না আসুক৷ 32 লোটের স্ত্রীরকথা য়েন মনে থাকে৷ 33 য়ে তার জীবন নিরাপদ রাখতে চায়, সে তা খোযাবে; আর য়ে তার জীবন হারায়, সেই তা বাঁচিয়ে রাখবে৷ 34 আমি তোমাদের বলছি, সেই রাত্রে একই বিছানায় দুজন শুয়ে থাকবে, তাদের মধ্যে একজনকে তুলে নেওযা হবে অন্যজন পড়ে থাকবে৷ 35 দুজন স্ত্রীলোক একসঙ্গে যাঁতাতে শস্য পিষবে, একজনকে তুলে নেওযা হবে আর অন্য জন পড়ে থাকবে৷’ 36 37 তখন অনুগামীরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘প্রভু, কোথায় এমন হবে?’যীশু তাদের বললেন, ‘য়েখানে শব, সেখানেই শকুন এসে জড়ো হবে৷’
1 নিরাশ না হয়ে তাদের য়ে সব সময় প্রার্থনা করা উচিত, তা বোঝাতে গিয়ে যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি দিলেন, 2 তিনি বললেন, ‘কোন এক শহরে একজন বিচারক ছিলেন৷ তিনি ঈশ্বরকে ভয় করতেন না, আবার মানুষকে গ্রাহ্য করতেন না৷ 3 সেই শহরে একজন বিধবা ছিল৷ সে বার বার সেই বিচারকের কাছে এসে বলত, ‘আপনাকে দেখতে হবে য়েন আমার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমি ন্যায় বিচার পাই!’ 4 কিছু দিন ধরে সেই বিচারক তার কোন কথাই শুনতে চাইলেন না৷ কিন্তু এক সময় তিনি মনে মনে বললেন, ‘যদিও আমি ঈশ্বরকে ভয় করি না আর মানুষকে মানি না, 5 তবু এই বিধবা যখন আমায় এত বিরক্ত করছে তখন আমি দেখব সে য়েন ন্যায় বিচার পায়, তাহলে সে আর বার বার এসে আমাকে জ্বালাতন করবে না৷” 6 এরপর প্রভু বললেন, ‘লক্ষ্য কর! ঐ অধার্মিক বিচারকর্তা কি বলল৷ 7 তাহলে ঈশ্বর কি তাঁর মনোনীত লোকেরা, যাঁরা দিন-রাত তাঁকে ডাকছে, তারা য়েন ন্যায় বিচার পায় তা দেখবেন না? তিনি কি তাদের সাহায্য করতে অযথা দেরী করবেন? 8 আমি তোমাদের বলছি, তিনি তাদের পক্ষে ন্যায় বিচার করবেনই আর তা তাড়াতাড়িই করবেন৷ যাইহোক, মানবপুত্র যখন আসবেন, তখন কি তিনি এই পৃথিবীতে বিশ্বাস দেখতে পাবেন?’ 9 যাঁরা নিজেদেরকে ধার্মিক মনে করত আর অন্যকে তুচ্ছ করত, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই দৃষ্টান্তটি দিলেন, 10 ‘দুজন লোক মন্দিরে প্রার্থনা করার জন্য গেল; তাদের মধ্যে একজন ফরীশী আর অন্য জন কর-আদায়কারী৷ 11 ফরীশী দাঁড়িয়ে নিজের সম্বন্ধে এইভাবে প্রার্থনা করতে লাগল, ‘য়ে ঈশ্বর, আমি তোমায় ধন্যবাদ দিচ্ছি য়ে আমি অন্য সব লোকদের মতো নই; দস্য়ু, প্রতারক, ব্যভিচারী অথবা এই কর-আদায়কারীর মতো নই৷ 12 আমি সপ্তাহে দুদিন উপোস করি, আর আমার আয়ের দশ ভাগের একভাগ দান করি৷’ 13 ‘কিন্তু সেই কর-আদায়কারী দাঁড়িয়ে স্বর্গের দিকে মুখ তুলে তাকাতেও সাহস করল না, বরং সে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বলল, ‘হে ঈশ্বর, আমি পাপী! আমার প্রতি দযা কর!’ 14 আমি তোমাদের বলছি, এই কর-আদায়কারী ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়ে বাড়ি চলে গেল কিন্তু ঐ ফরীশী নয়৷ য়ে কেউ নিজেকে বড় করে তাকে ছোট করা হবে; আর য়ে নিজেকে ছোট করে তাকে বড় করা হবে৷’ 15 লোকেরা একসময় তাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল য়েন তিনি তাদের স্পর্শ করে আশীর্বাদ করেন৷ এই দেখে শিষ্যরা তাদের খুব ধমক দিলেন৷ 16 কিন্তু যীশু সেই ছেলেমেয়েদের তাঁর কাছে ডাকলেন, আর বললেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আমার কাছে আসতে দাও, তাদের বারণ করো না, কারণ এই শিশুদের মতো লোকদের জন্যই তো ঈশ্বরের রাজ্য৷ 17 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি কেউ শিশুর মতো ঈশ্বরের রাজ্যকে গ্রহণ না করে তবে সে কোনমতে তার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না!’ 18 ইহুদীদের একজন দলনেতা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘হে সদগুরু, অনন্ত জীবন পেতে হলে আমাকে কি করতে হবে?’ 19 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি আমায় সত্ বলছ, কেন? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ সত্ নয়৷ 20 তুমি তো ঈশ্বরের সব আজ্ঞা জান, ব্যভিচার কোর না, নরহত্যা করো না, চুরি করো না, মিথ্যা সাক্ষী দিও না, তোমরা বাবা-মাকে সম্মান করো৷” 21 সে বলল, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই সে সব পালন করে আসছি৷’ 22 একথা শুনে যীশু তাকে বললেন, ‘কিন্তু তোমার মধ্যে একটি বিষয়ের এখনও ত্রুটি আছে৷ তোমার যা কিছু আছে সে সব বিক্রি করে তা গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাহলে স্বর্গে তোমার ধন-সম্পদ জমা হবে, তারপর আমায় অনুসরণ কর৷’ 23 কিন্তু এই কথা শুনে তার খুবই দুঃখ হল, কারণ তার প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল৷ 24 যীশু তাকে দুঃখিত হতে দেখে বললেন, ‘যাদের ধন-সম্পদ আছে তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কত কঠিন! 25 হ্যাঁ, একজন ধনীর পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা অপেক্ষা ছুঁচের মধ্য দিয়ে উটের পার হওযা সহজ৷’ 26 য়ে সব লোক একথা শুনল তারা বলে উঠল, ‘তাহলে কে উদ্ধার পেতে পারে?’ 27 যীশু বললেন, ‘মানুষের পক্ষে যা সন্ভব নয় ঈশ্বরের পক্ষে তা সন্ভব৷’ 28 তখন পিতর বললেন, ‘দেখুন, আমরা তো সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে আপনার অনুসারী হয়েছি৷’ 29 যীশু তখন তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য ঘর-বাড়ি, স্ত্রী, ভাই-বোন, মা-বাবা কিংবা ছেলে-মেয়ে ত্যাগ করেছে, 30 তারা প্রত্যেকে এ জীবনেই সেই সব বহুগুণে ফিরে পাবে, এছাড়া আগামী যুগে লাভ করবে অনন্ত জীবন৷’ 31 যীশু তাঁর বারোজন প্রেরিতকে একপাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘শোন! আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি; আর ভাববাদীরা মানবপুত্রের বিষয়ে যা কিছু লিখে গেছেন, সে সবই পূর্ণ হবে৷ 32 হ্যাঁ, অইহুদীদের হাতে তাঁকে তুলে দেওযা হবে, তারা তাঁকে উপহাস করবে, গালাগালি দেবে, তাঁর গায়ে থুতু ছেটাবে৷ 33 তারা তাঁকে কশাঘাত করবে ও শেষ পর্যন্ত হত্যাই করবে; আর তৃতীয় দিনে মৃত্যুর মধ্য থেকে তিনি পুনরুত্থিত হবেন৷’ 34 তিনি কি বলতে চাইছেন, প্রেরিতেরা কিন্তু তার কিছুই বুঝতে পারলেন না৷ তিনি য়ে কি বলছেন তা তাঁরা বুঝতে পারলেন না, কারণ এসব কথার অর্থ তাদের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল৷ 35 যীশু যখন যিরীহোর কাছাকাছি পৌঁছালেন, তখন সেখানে রাস্তার ধারে বসে একজন অন্ধ ভিক্ষা করছিল৷ 36 অনেক লোকজন যাওযার আওযাজ শুনে সেই ভিখারী ব্যাপার কি তা জিজ্ঞাসা করল৷ 37 লোকেরা তাঁকে বলল, ‘নাসরতীয় যীশু সেখান দিয়ে যাচ্ছেন৷’ 38 তখন সে চিত্কার করে বলে উঠল, ‘হে দাযূদের বংশধর যীশু, আমাকে দয়া করুন৷’ 39 য়ে সব লোক সেই ভীড়ের সামনে ছিল তারা তাকে চুপ করতে বলল, কিন্তু সে আরও চিত্কার করে বলল, ‘হে দাযূদের বংশধর আমায় দয়া করুন!’ 40 যীশু থেমে গেলেন, তিনি সেই অন্ধকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে বললেন৷ সেই অন্ধ তাঁর কাছে এলে পর তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, 41 ‘তুমি কি চাও? তোমার জন্য আমি কি করব?’সে বলল, ‘প্রভু, আমি য়েন দেখতে পাই৷’ 42 যীশু তাকে বললেন, ‘বেশ! তুমি চোখে দেখতে পাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করল৷’ 43 সঙ্গে সঙ্গে সে দেখতে পেল আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে যীশুর পেছনে পেছনে চলল৷ যাঁরা এই ঘটনা দেখল তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷
1 যীশু যিরীহো শহরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন৷ 2 সেখানে সক্কেয় নামে একজন লোক ছিল৷ সে ছিল একজন উচ্চ-পদস্থ কর আদায়কারী ও খুব ধনী ব্যক্তি৷ 3 কে যীশু তা দেখার জন্য সক্কেয় খুবই চেষ্টা করছিল, কিন্তু বেঁটে হওযাতে ভীড়ের জন্য যীশুকে দেখতে পাচ্ছিল না৷ 4 তাই সবার আগে ছুটে গিয়ে য়ে পথ ধরে যীশু আসছিলেন, সেই পথের পাশে একটা সুকমোর গাছে উঠল যাতে সেখান থেকে যীশুকে দেখতে পায়৷ 5 যীশু সেখানে এসে ওপর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘সক্কেয় তাড়াতাড়ি নেমে এস, কারণ আজ আমায় তোমার ঘরে থাকতে হবে৷’ 6 সক্কেয় তাড়াতাড়ি নেমে এসে মহানন্দে যীশুকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অভ্যর্থনা জানাল৷ 7 সেখানে যাঁরা ছিল, এই দেখে তারা সকলে অনুয়োগের সুরে বলল, ‘উনি একজন পাপীর ঘরে অতিথি হয়ে গেলেন৷’ 8 কিন্তু সক্কেয় উঠে দাঁড়িয়ে প্রভুকে বলল, ‘প্রভু দেখুন, আমি আমার সম্পদের অর্ধেক গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দেব, আর যদি কাউকে ঠকিয়ে থাকি তবে তার চতুর্গুণ ফিরিয়ে দেব৷’ 9 যীশু তাকে বললেন, ‘আজ এই বাড়িতে পরিত্রাণ এসেছে, য়েহেতু এই মানুষটি অব্রাহামের পুত্র৷ 10 কারণ যা হারিয়ে গিয়েছিল তা খুঁজে বের করতে ও উদ্ধার করতেই মানবপুত্র এ জগতে এসেছেন৷’ 11 যীশু জেরুশালেমের কাছাকাছি এগিয়ে গেলে লোকদের ধারণা হল য়ে তখনই বুঝি ঈশ্বরের রাজ্য এসে পড়ল৷ তাই তিনি তাদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি দিলেন৷ 12 যীশু বললেন, ‘একজন সম্ভ্রান্ত বংশের লোক রাজ পদ নিয়ে ফিরে আসার জন্য দূর দেশে যাত্রা করলেন৷ 13 আবার আগে তিনি তাঁর দশজন কর্মচারীকে ডেকে প্রত্যেকের হাতে একটি করে মোট দশটি মোহর দিয়ে বললেন, ‘আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত এই দিয়ে ব্যবসা করো৷’ 14 কিন্তু তাঁর প্রজারা তাকে ঘৃণা করত; আর তিনি চলে যাওযার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকেরা একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে বলে পাঠাল, ‘আমরা চাই না য়ে এই লোক আমাদের রাজা হোক্!’ 15 ‘কিন্তু সেই ব্যক্তি রাজপদ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলেন; আর য়ে কর্মচারীদের তিনি টাকা দিয়েছিলেন তাদের সকলকে ডেকে পাঠালেন৷ তিনি দেখতে চাইলেন য়ে তারা কে কত লাভ করেছে৷ 16 প্রথম জন এসে বলল, ‘প্রভু, আপনার এক মোহর খাটিয়ে দশ মোহর লাভ হয়েছে৷ 17 তখন মনিব তাকে বললেন, ‘খুব ভাল করেছ, তুমি খুব ভাল কর্মচারী৷ তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত ছিলে তাই তোমাকে দশটি শহরের শাসক হিসেবে নিযোগ করা হবে৷’ 18 এরপর দ্বিতীয় জন এসে বলল, ‘প্রভু আপনার এক মোহর খাটিয়ে পাঁচ মোহর লাভ হয়েছে৷’ 19 তিনি তাকে বললেন, ‘তোমাকে পাঁচটি শহরের শাসনভার দেওযা হবে৷’ 20 এরপর আর একজন এসে বলল, ‘প্রভু, এই নিন আপনার মোহর, এটা আমি রুমালে বেঁধে আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম৷ 21 আপনার বিষয়ে আমার খুব ভয় ছিল, কারণ আপনি খুব কঠিন লোক৷ আপনি যা জমা করেন নি তাই নিয়ে থাকেন, আর যা বোনেন না তার ফসল কাটেন৷’ 22 তখন তার প্রভু তাকে বললেন, ‘তোমার কথা অনুসারেই আমি তোমার বিচার করব, তুমি একজন দুষ্ট কর্মচারী৷ তুমি জানতে আমি একজন কঠিন লোক, আমি যা জমা করি না তাই পেতে চাই, যা বুনি না তাই কাটি৷ 23 তবে তুমি আমার টাকা কেন মহাজনদের কাছে জমা রাখনি? তাহলে তো আমি টাকার সুদটাও অন্ততঃ পেতাম৷’ 24 আর যাঁরা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল তিনি তাদের বললেন, ‘এর কাছ থেকে ঐ মোহর নিয়ে নাও আর যার দশ মোহর আছে তাকে ওটা দাও৷’ 25 তখন তারা তাকে বলল, ‘প্রভু, ওর তো দশটা মোহর আছে!’ 26 প্রভু বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে আর যার নেই, তার য়েটুকু আছে তাও কেড়ে নেওযা হবে৷ 27 কিন্তু যাঁরা আমার শত্রু, যাঁরা চায় নি য়ে আমি তাদের ওপর রাজত্ব করি, তাদের এখানে নিয়ে এসে আমার সামনেই মেরে ফেল৷” 28 এইসব কথা বলার পর যীশু জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন৷ 29 তিনি জৈতুন পর্বতের কাছে বৈত্ফগী ও বৈথনিযা গ্রামের কাছাকাছি এলে তাঁর দুজন শিষ্যকে বললেন, 30 ‘তোমরা ঐ গ্রামে যাও৷ ঐ গ্রামে ঢোকার মুখেই একটা বাচ্চা গাধা বাঁধা আছে দেখবে, সেটার ওপর এর আগে কেউ কখনও বসেনি, সেটা খুলে এখানে নিয়ে এস৷ 31 কেউ যদি তোমাদের জিজ্ঞেস করে, তোমরা ওটা খুলছ কেন? তোমরা বোল, ‘এটাকে প্রভুর দরকার আছে৷” 32 যাদের পাঠানো হয়েছিল তাঁরা গিয়ে যীশুর কথা মতোই সব কিছু দেখতে পেলেন৷ 33 তাঁরা যখন সেই বাচ্চা গাধাটা খুলছিলেন তখন তার মালিক এসে তাঁদের জিজ্ঞেস করল, ‘আপনারা এটা খুলছেন কেন?’ 34 তাঁরা বললেন, ‘এটাকে প্রভুর দরকার আছে৷’ 35 এরপর তাঁরা গাধাটাকে যীশুর কাছে নিয়ে এসে তার ওপর তাঁদের চাদর বিছিয়ে দিলেন, আর তার পিঠে যীশুকে বসালেন৷ 36 তিনি যখন যাচ্ছিলেন, তখন লোকেরা যাত্রা পথে নিজেদের জামা-চাদর বিছিয়ে দিচ্ছিল৷ 37 তিনি জৈতুন পর্বতমালা থেকে নেমে যাবার রাস্তার মুখে এসে পৌঁছালেন৷ সেই সময় যাঁরা তাঁর পেছনে পেছনে আসছিল, তারা যীশু য়ে সব অলৌকিক কাজ করেছিলেন তা দেখতে পেয়েছিল বলে আনন্দের উচ্ছাসে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বলল, 38 ‘ধন্য! সেই রাজা যিনি প্রভুর নামে আসছেন!’ গীতসংহিতা 118:26 39 সেই ভীড়ের মধ্য থেকে কয়েকজন ফরীশী যীশুকে বলল, ‘গুরু, আপনার অনুগামীদের ধমক্ দিন!’ 40 যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, ওরা যদি চুপ করে, তবে পাথরগুলো চেঁচিয়ে উঠবে৷’ 41 তিনি জেরুশালেমের কাছাকাছি এসে শহরটি দেখে কেঁদে ফেললেন৷ 42 তিনি বললেন, ‘হায় কিসে তোমার শাস্তি হবে তা যদি তুমি আজ বুঝতে পারতে! কিন্তু এখন তা তোমার দৃষ্টির অগোচরে রইল৷ 43 সেই দিন আসছে, যখন তোমার শত্রুরা তোমার চারপাশে বেষ্টনী গড়ে তুলবে৷ তারা তোমায় ঘিরে ধরবে, আর চারপাশ থেকে চেপে ধরবে৷ 44 তারা তোমাকে ও তোমার সন্তানদের ধ্বংস করবে৷ তোমার প্রাচীরের একটা পাথরের ওপর আর একটা পাথর থাকতে দেবে না, কারণ তোমার তত্ত্বাবধানের জন্য ঈশ্বর য়ে তোমার কাছে এলেন, এ তুমি বুঝলে না৷’ 45 এরপর যীশু মন্দিরের মধ্যে ঢুকলেন আর সেখানে যাঁরা জিনিসপত্র বিক্রি করছিল তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিতে লাগলেন৷ 46 তিনি তাদের বললেন, ‘শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমার গৃহ হবে প্রার্থনার গৃহ৷’কিন্তু তোমরা এটাকে ডাকাতদের আড্ডাখানায় পরিণত করেছ৷’ 47 তখন থেকে প্রত্যেক দিন তিনি মন্দিরে শিক্ষা দিতে থাকলেন৷ প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ইহুদী নেতারা তাঁকে হত্যা করার উপায় খুঁজতে লাগল৷ 48 কিন্তু তারা কোনভাবেই কোন পথ খুঁজে পেল না, কারণ সব লোকই খুব মন দিয়ে তাঁর কথাগুলি শুনত৷
1 একদিন যীশু যখন মন্দিরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকেরা, ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ইহুদী নেতারা একজোট হয়ে তাঁর কাছে এল৷ 2 তারা তাঁকে প্রশ্ন করল, ‘কোন ক্ষমতায় তুমি এসব করছ তা আমাদের বল! কে তোমাকে এই অধিকার দিয়েছে?’ 3 যীশু তাদের বললেন, ‘আমিও তোমাদের একটা প্রশ্ন করব৷ 4 বলো তো য়োহন বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার ঈশ্বরের কাছে থেকে পেয়েছিলেন না মানুষের কাছ থেকে?’ 5 তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করল, ‘আমরা যদি বলি, ‘ঈশ্বরের কাছ থেকে,’ তাহলে ও বলবে তাহলে তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো নি কেন?’ 6 কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে লোকেরা আমাদের পাথর ছুঁড়ে মারবে, কারণ তারা য়োহনকে একজন ভাববাদী বলেই বিশ্বাস করে৷’ 7 তাই তারা বলল, ‘আমরা জানি না৷’ 8 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তাহলে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি৷’ 9 যীশু এই দৃষ্টান্তটি লোকদের বললেন, ‘একজন লোক একটা দ্রাক্ষা ক্ষেত করে তা চাষীদের কাছে ইজারা দিয়ে বেশ কিছু দিনের জন্য বিদেশে গেল৷ 10 ফলের সময় হলে সে তার একজন কর্মচারীকে সেই চাষীদের কাছে পাঠাল, য়েন তারা ক্ষেতের ফসলের কিছু ভাগ দেয়; কিন্তু চাষীরা সেই কর্মচারীকে মারধর করে খালি হাতে তাড়িয়ে দিল৷ 11 এরপর সে তার আর একজন কর্মচারীকে পাঠাল; কিন্তু তারা তাকেও মারধর করল৷ সেই কর্মচারীর প্রতি তারা জঘন্য ব্যবহার করে তাকে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিল৷ 12 পরে সে তার তৃতীয় কর্মচারীকে পাঠাল, চাষীরা তাকেও ক্ষতবিক্ষত করে বের করে দিল৷ 13 তখন সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক বলল, ‘আমি এখন কি করব? আমি আমার প্রিয় পুত্রকে পাঠাব, হয়তো তারা তাকে মান্য করবে৷’ 14 কিন্তু সেই চাষীরা সেই ছেলেকে দেখতে পেয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, ‘এই হচ্ছে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী, এস একে আমরা খতম করি, তাহলে আমরাই হব এই সম্পত্তির মালিক৷’ 15 এই বলে তারা তাকে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে টেনে নিয়ে গিয়ে হত্যা করল৷‘এখন সেই ক্ষেতের মালিক তাদের প্রতি কি করবে? 16 সে এসে ঐ চাষীদের মেরে ফেলবে ও ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবে৷’এই কথা শুনে তারা সবাই বলল, ‘এরকম য়েন না হয়!’ 17 কিন্তু যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তাহলে এই য়ে কথা শাস্ত্রে লেখা আছে এর অর্থ কি,‘রাজমিস্ত্রিরা য়ে পাথরটা বাতিল করে দিল, সেটাই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর?’গীতসংহিতা 118:22 18 য়ে কেউ সেই পাথরের ওপর পড়বে, সে ভেঙ্গে টুকরো-টুকরো হয়ে যাবে, আর যার ওপর সেই পাথর পড়বে সে ভেঙ্গে গুঁড়ো হয়ে যাবে৷’ 19 প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সেই সময় থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য উপায় খুঁজতে লাগল; কিন্তু তারা জনসাধারণকে ভয় পাচ্ছিল৷ তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করতে চাইছিল কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল য়ে যীশু তাদের বিরুদ্ধেই ঐ দৃষ্টান্তটি দিয়েছিলেন৷ 20 তাই তারা তাঁর ওপর নজর রাখতে কয়েকজন লোককে গুপ্তচররূপে তাঁর কাছে পাঠাল, যাঁরা ভাল লোক সেজে তাঁর কাছে গেল য়েন যীশুর কথা ধরে তাঁকে রোমীয় রাজ্যপালের ক্ষমতা ও বিচারের অধীনে তুলে দিতে পারে৷ 21 তাই তারা তাঁকে একটি কথা জিজ্ঞেস করল, ‘গুরু, আমরা জানি, য়ে যা ন্যায় আপনি সেই কথাই বলেন ও সেই শিক্ষাই দেন; আর আমরা এও জানি য়ে আপনি কারোর প্রতি পক্ষপাত করেন না, কিন্তু ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সত্য শিক্ষাই দেন৷ 22 আচ্ছা, কৈসরকে কর দেওযা কি আমাদের উচিত?’ 23 যীশু তাদের চালাকি ধরে ফেলেছিলেন, তাই বললেন, 24 ‘আমার একটা রূপোর টাকা দেখছ৷ এতে কার মূর্ত্তি ও কার নাম আছে?’ 25 তারা বলল, ‘কৈসরের!’ তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তাহলে কৈসরের যা তা কৈসরকে দাও, আর ঈশ্বরের যা তা ঈশ্বরকে দাও৷’ 26 সমস্ত লোকের সামনে যীশু যা বললেন, তাতে তারা তাঁর কোন ভুল ধরতে পারল না৷ তাঁর দেওযা উত্তরে তারা বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে গেল৷ 27 তখন সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কয়েকজন লোক যীশুর কাছে এল৷ এই সদ্দূকীরা বলত, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান বলে কিছু নেই৷ তারা এসে যীশুকে প্রশ্ন করল, 28 ‘গুরু, মোশি আমাদের জন্য লিখে রেখে গেছেন য়ে নিঃসন্তান অবস্থায় যদি কোন লোক তার স্ত্রীকে রেখে মারা যায়, তবে তার ভাই সেই স্ত্রীকে বিয়ে করে ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা করবে৷ 29 এরকম একজন যাঁরা সাত ভাই ছিল, তাদের প্রথম ভাই বিয়ে করার পর নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল৷ 30 দ্বিতীয় ভাই তখন সেই বিধবাকে বিয়ে করল৷ 31 এরপর তৃতীয় ভাই, এইভাবে সাত ভাই-ই একজন স্ত্রীকে বিয়ে করল আর তারা সকলেই নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল৷ 32 পরে সেই স্ত্রীও মারা গেল৷ 33 এখন পুনরুত্থানের সময়ে সে কার স্ত্রী হবে, কারণ সাত জনই তো তাকে বিয়ে করেছিল?’ 34 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘এই যুগের লোকেরাই বিয়ে করে আর তাদের বিয়ে দেওযা হয়৷ 35 কিন্তু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়ে আগামী যুগের য়োগ্য বলে যাদের গন্য করা হবে, তারা বিয়ে করবে না বা তাদের বিয়ে দেওযাও হবে না৷ 36 তারা আর মরতে পারে না, কারণ তারা স্বর্গদূতদের মতো, মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছে বলে তারা ঈশ্বরের সন্তান৷ 37 জ্বলন্ত ঝোপেরবিষয়ে য়েখানে লেখা হয়েছে, সেখানে মোশিও দেখিয়েছেন য়ে মৃতেরা পুনরুত্থিত হয়৷ সেখানে মোশি প্রভু ঈশ্বরকে ‘অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর, ও যাকোবের ঈশ্বরবলে উল্লেখ করেছেন৷’ 38 ঈশ্বর মৃত লোকদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিত লোকদেরই ঈশ্বর৷ তারা সকলেই যাঁরা আগামী যুগের য়োগ্য লোক ঈশ্বরের চোখে জীবিত থাকে৷’ 39 ব্যবস্থার শিক্ষকদের মধ্যে কয়েকজন বলল, ‘গুরু, আপনি ঠিকই বলেছেন!’ 40 এরপর তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস কারো হল না৷ 41 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘তারা কি করে বলে য়ে খ্রীষ্ট রাজা দাযূদের পুত্র? 42 কারণ গীতসংহিতায় দাযূদ নিজেই বলেছেন,‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, 43 যতদিন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পাদপীঠে পরিণত করি, তুমি আমার ডানদিকে বস৷’গীতসংহিতা 110:1 44 দাযূদ তো খ্রীষ্টকে এইভাবে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করলেন, তাহলে খ্রীষ্ট কিভাবে তাঁর সন্তান হলেন?’ 45 সমস্ত লোক যখন এসব কথা শুনছিল, তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 46 ‘ব্যবস্থার শিক্ষকদের থেকে সাবধান৷ তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরে ঘুরে বেড়াতেও হাটে বাজারে লোকদের কাছ থেকে সম্মান পেতে ভালবাসে; আর সমাজগৃহে বিশেষ সম্মানের স্থানে বসতে ও ভোজসভায় সম্মানের আসন দখল করতে ও ভালবাসে৷ 47 তারা একদিকে লোক দেখানো লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে, অপরদিকে বিধবাদের সর্বস্ব গ্রাস করে, এদের ভয়ঙ্কর শাস্তি হবে৷’
1 যীশু তাকিয়ে দেখলেন, ধনী লোকেরা মন্দিরের দানের বাক্সে তাদের দান রাখছে৷ 2 এরই মাঝে একজন অতি গরীব বিধবা তাতে খুব ছোট্ট ছোট্ট তামার মুদ্রা রাখল৷ 3 তখন যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই গরীব বিধবা অন্য আর সকলের থেকে অনেক বেশী দান করল৷ 4 আমি একথা বলছি কারণ অন্য আর সব লোক তাদের সম্পত্তির বাড়তি অংশ ঐ বাক্সে ফেলে গেল, কিন্তু এই বিধবার অভাব থাকা সত্ত্বেও জীবন ধারণের জন্য তার যা সম্বল ছিল, তাই দিয়ে গেল৷’ 5 শিষ্যদের মধ্যে কেউ কেউ সেই মন্দিরের বিষয়ে এই মন্তব্য করলেন য়ে, ‘সুন্দর সুন্দর পাথর দিয়ে ও ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দানের জিনিস দিয়ে এই মন্দিরকে কেমন সাজানো হয়েছে!’ 6 যীশু তাঁদের বললেন, ‘এই য়ে সব জিনিস তোমরা দেখছ, সময় আসবে যখন এর একটা পাথর আর একটার ওপর থাকবে না, সব ভেঙ্গে ফেলা হবে৷’ 7 শিষ্যরা তখন যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘গুরু এসব কখন ঘটবে? আর কি চিহ্ন দেখে বোঝা যাবে এসব ঘটবার সময় এসে গেছে?’ 8 যীশু বললেন, ‘সাবধান! কেউ য়েন তোমাদের না ভুলায়, কারণ অনেকেই আমার নাম ধারণ করে আসবে আর বলবে, ‘আমিই তিনি’ আর তারা বলবে, ‘সময় ঘনিয়ে এসেছে৷’ তাদের অনুসারী হযো না! 9 তোমরা যখন যুদ্ধ ও বিদ্রোহের কথা শুনতে পাবে, তাতে ভয় পেও না, কারণ প্রথমে নিশ্চয়ই এসব হবে; কিন্তু তখনও শেষ সময় আসতে বাকি!’ 10 এরপর তিনি তাদের বললেন, ‘এক জাতি আর এক জাতির বিরুদ্ধে, এক রাজ্য আর এক রাজ্যের বিরুদ্ধে উঠবে৷ 11 ‘মহা ভূমিকম্প হবে, বিভিন্ন জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও মহামারী দেখা দেবে; আর আকাশের বুকে ভযাবহ ঘটনা ও মহত্ চিহ্ন দেখতে পাবে৷ 12 ‘কিন্তু এসব ঘটনা ঘটার আগে, তারা তোমাদের গ্রেপ্তার করবে, তোমাদের প্রতি নির্য়াতন করবে৷ তারা বিচারের জন্য তোমাদের সমাজ-গৃহে সঁপে দেবে ও তোমাদের কারাগারে ভরবে৷ আমারই কারণে তারা তোমাদের রাজাদের ও রাজ্যপালদের সামনে টেনে নিয়ে যাবে৷ 13 তাতে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য তোমরা সুয়োগ পাবে৷ 14 তোমরা মনের দিক থেকে তৈরী থেকো; আত্মপক্ষ সমর্থন করতে তখন কি বলবে, কি জবাবদিহি করবে তার জন্য চিন্তা করো না৷ 15 কারণ সেই সময় আমি তোমাদের বুদ্ধি দেব, তোমাদের মুখে এমন কথা জোগাব য়ে তোমাদের বিপক্ষরা তা অস্বীকার করতে পারবে না আবার তার প্রতিরোধও করতে পারবে না৷ 16 কিন্তু তোমাদের আপন বাবা-মা ভাইও আত্মীয় বন্ধুরাই তোমাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে তোমাদের ধরিয়ে দেবে; এমন কি তোমাদের কাউকে কাউকে মেরেও ফেলবে৷ 17 আমারই কারণে তোমরা সকলের কাছে ঘৃণার পাত্র হবে৷ 18 কিন্তু তোমাদের মাথায় একটা চুলও নষ্ট হবে না৷ 19 তোমরা যদি বিশ্বাসে স্থির থাক, তবেই তোমাদের প্রাণ রক্ষা পাবে৷ 20 ‘তোমরা যখন দেখবে য়ে সৈন্যসামন্তরা জেরুশালেমকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেছে, তখন বুঝবে য়ে তার ধ্বংসের সময় ঘনিয়ে এসেছে৷ 21 তখন যাঁরা যিহূদিযায় থাকবে তারা য়েন পালিয়ে যায়৷ যাঁরা জেরুশালেমে থাকবে তারা য়েন অবশ্যই নগর ছেড়ে পালায়; আর যাঁরা গ্রামে থাকবে তারা য়েন নগরে না আসে৷ 22 কারণ এই দিনগুলো হচ্ছে শান্তির দিন, যা শাস্ত্রের বাণী অনুসারে পূর্ণ হবে৷ 23 ঐ দিনগুলোতে যাদের প্রসবকাল ঘনিয়ে এসেছে ও যাদের কোলে দুধের বাচ্চা আছে, সেই সব স্ত্রীলোকদের ভয়ঙ্কর দুর্দশা হবে৷ আমি একথা বলছি কারণ দেশে মহাসংকট আসছে ও এই লোকদের ওপর ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসছে৷ 24 তরবারির আঘাতে তারা মারা পড়বে, আর তাদের বন্দী করে সকল জাতির কাছে নিয়ে যাওযা হবে৷ যতদিন না অইহুদীদের নিরুপিত সময় পূর্ণ হচ্ছে, জেরুশালেম অইহুদীদের দ্বারা অবজ্ঞা ভরে পদদলিত হবে৷ 25 ‘তখন চাঁদে, সূর্য়ে ও তারাগুলিতে অনেক বিস্ময়কর জিনিস দেখা যাবে৷ পৃথিবীতে সমস্ত জাতি হতাশায় ভুগবে৷ তারা সমুদ্র গর্জন ও প্রচণ্ড ঢেউ দেখে বিহ্বল হয়ে পড়বে৷ 26 পৃথিবীতে য়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা আসছে তার কথা ভেবে ভয়েতে লোকে অজ্ঞান হয়ে যাবে, কারণ আকাশের সব শক্তিগুলি ওলোট-পালট হয়ে যাবে৷ 27 এর পরই তারা মহাপরাক্রমে ও মহিমামণ্ডিত হয়ে মানবপুত্রকে মেঘে করে আসতে দেখবে৷ 28 এসব ঘটনা ঘটতে দেখলে মাথা তুলে উঠে দাঁড়িও, কারণ জেনো য়ে তখন তোমাদের মুক্তি আসছে!’ 29 এরপর যীশু তাদের একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, ‘ডুমুর গাছ ও অন্যান্য গাছের দিকে দেখ৷ 30 য়ে মুহূর্তে তাদের নতুন পাতা বের হয়, তা দেখে তোমরা বুঝতে পার য়ে গ্রীষ্মকাল এসে পড়ল বলে৷ 31 ঠিক সেই রকম এই সব ঘটতে দেখলে তোমরা বুঝবে য়ে ঈশ্বরের রাজ্য এসে পড়েছে৷ 32 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ না এসব ঘটছে, এই বংশ লোপ পাবে না৷ 33 আকাশ ও পৃথিবীর লোপ পাবে, কিন্তু আমার বাক্য কখনও লোপ পাবে না৷ 34 ‘তোমরা সতর্ক থেকো৷ উচ্ছৃঙ্খল আমোদ-প্রমোদে, মত্ততায়, জাগতিক ভাবনা চিন্তায় তোমাদের মন য়েন আচ্ছন্ন না হয়ে পড়ে, আর সেই দিন হঠাত্ ফাঁদের মতো তোমাদের ওপর এসে না পড়ে৷ 35 বাস্তবিক, পৃথিবীর সব লোকের জন্যই সেই দিন আসবে৷ 36 তাই সব সময় সজাগ থেকো, আর প্রার্থনা করো য়েন যাই ঘটুক না কেন তা কাটিয়ে উঠবার ও মানবপুত্রের সামনে দাঁড়াবার শক্তি তোমাদের থাকে৷’ 37 তিনি মন্দিরের মধ্যে প্রতিদিন শিক্ষা দিতেন কিন্তু সন্ধ্যা হলে রাতে থাকার জন্য জৈতুন পর্বতে চলে য়েতেন৷ 38 প্রতিদিন খুব ভোরে উঠে লোকেরা তাঁর কথা শোনার জন্য মন্দিরে য়েত৷
1 সেই সময় খামিরবিহীন রুটির পর্ব এগিয়ে এলে, এই পর্বকে নিস্তারপর্ব বলা হত৷ 2 এদিকে প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুকে হত্যা করার উপায় খুঁজতে লাগল, কারণ তারা লোকদের ভয় করত৷ 3 এই সময় যিহূদা, য়ে ছিল বারো জন প্রেরিতের মধ্যে একজন, যাকে যিহূদা ঈষ্ক রিযোতীয় বলা হত তার অন্তরে শয়তান ঢুকল৷ 4 যিহূদা কেমন করে যীশুকে ধরিয়ে দেবে সে বিষয়ে পরামর্শ করতে প্রধান যাজকদের ও মন্দিরের রক্ষীবাহিনীর পদস্থ কর্মচারীদের কাছে গেল৷ 5 তারা যিহূদার কথা শুনে খুবই খুশী হয়ে তাকে এর জন্য টাকা দিতে রাজী হল৷ 6 যিহূদাও সম্মত হয়ে যখন লোকের ভীড় থাকবে না সেই সময় যীশুকে ধরিয়ে দেবার সুয়োগ খুঁজতে লাগল৷ 7 এরপর খামিরবিহীন রুটির দিন এল, য়ে দিনে নিস্তারপর্বের মেষ বলি দিতে হত৷ 8 তাই যীশু পিতর ও য়োহনকে বললেন, ‘যাও, আমাদের জন্য নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত কর, য়েন আমরা তা গিয়ে খেতে পারি৷’ 9 তাঁরা যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কোথায় চান, আমরা কোথায় তা প্রস্তুত করব?’ 10 যীশু তাঁদের বললেন, ‘শোন! তোমরা শহরে ঢোকার মুখেই দেখতে পাবে একজন লোক এক কলসী জল নিয়ে যাচ্ছে৷ তার পেছনে পেছনে গিয়ে সে য়ে বাড়িতে ঢুকবে, 11 সেই বাড়ির মালিককে বলবে, ‘গুরু, বলেছেন, আপনার সেই অতিথিঘর কোনটা, য়েখানে আমি আমার শিষ্যদের সঙ্গে নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে পারি৷’ 12 তখন সেই লোকটি তোমাদের ওপর তলার একটি বড় সাজানো ঘর দেখিয়ে দেবে৷ তোমরা সেখানেই আযোজন কোর৷’ 13 যীশু য়েমন বলেছিলেন, তাঁরা গিয়ে সেরকমই দেখতে পেলেন আর নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করলেন৷ 14 তারপর সময় হলে যীশু তাঁর প্রেরিতদের সঙ্গে গিয়ে নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে এলেন৷ 15 তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমার কষ্টভোগের আগে তোমাদের সঙ্গে এই নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে আমি খুবই ইচ্ছা করেছি৷ 16 কারণ আমি তোমাদের বলছি, যতদিন না ঈশ্বরের রাজ্যে এর প্রকৃত উদ্দেশ্য পূর্ণ হয় ততদিন পর্যন্ত আমি এই ভোজ আর খাবো না৷’ 17 এরপর তিনি দ্রাক্ষারসের পেযালা হাতে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, ‘এই নাও, নিজেদের মধ্যে এটা ভাগ করে নাও৷ 18 কারণ আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য না আসা পর্যন্ত আমি আর দ্রাক্ষারস পান করব না৷’ 19 এরপর তিনি রুটি নিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে তা খণ্ড খণ্ড করলেন, আর তা প্রেরিতদের দিয়ে বললেন, ‘এ আমার শরীর, যা তোমাদের জন্য দেওযা হল৷ আমার স্মরনার্থে তোমরা এটা কোর৷’ 20 খাবার পর সেইভাবে দ্রাক্ষারসের পেযালা নিয়ে বললেন, ‘আমার রক্তের মাধ্যমে মানুষের জন্য ঈশ্বরের দেওযা য়ে নতুন নিয়ম শুরু হল, এই পানপাত্রটি তারই চিহ্ন; এই রক্ত তোমাদের সকলের জন্য পাতিত হল৷’ 21 ‘কিন্তু দেখ! য়ে আমাকে ধরিয়ে দেবে তার হাত আমার সঙ্গে এই টেবিলের ওপরেই আছে৷ 22 কারণ য়েমন নির্ধারিত হয়েছে সেই অনুসারেই মানবপুত্রকে মরতে হবে, কিন্তু ধিক্ সেই লোককে য়ে তাঁকে ধরিয়ে দেবে৷’ 23 তাঁরা নিজেদের মধ্যে তখন একে অপরকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ‘আমাদের মধ্যে কে এমন লোক হতে পারে, য়ে এই কাজ করবে?’ 24 সেই সময় তাঁদের মধ্যে কাকে সব থেকে বড় বলা হবে, এই নিয়ে তর্ক শুরু হল৷ 25 কিন্তু যীশু তাদের বললেন, ‘অইহুদীদের মধ্যেই রাজারা তাদের প্রজাদের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করে, আর যাঁরা তাদের শাসন করে থাকে তাদেরই আবার ‘উপকারক’ বলা হয়৷ 26 কিন্তু তোমাদের মধ্যে এমনটি হওযা উচিত নয়৷ তোমাদের মধ্যে য়ে সব থেকে বড় সে হোক সবার চেয়ে ছোটর মতো আর য়ে নেতা সে হোক দাসের মতো৷ 27 কে প্রধান, য়ে খেতে আসে, না য়ে পরিবেশন করে? য়ে খেতে আসে, সেই নয় কি? কিন্তু আমি তোমাদের মধ্যে দাসের মতো আছি৷ 28 আমার পরীক্ষার সময় তোমরাই তো আমার পাশে দাঁড়িয়েছ৷ 29 তাই আমার পিতা য়েমন আমার রাজত্ব করার ক্ষমতা দিয়েছেন, তেমনি আমিও তোমাদের সেই ক্ষমতা দান করছি৷ 30 য়েন আমার রাজ্যে তোমরা আমার সঙ্গে পান আহার করতে পার, আর তোমরা সিংহাসনে বসে ইস্রায়েলের বারো বংশের বিচার করবে৷ 31 ‘শিমোন, শিমোন, শয়তান গমের মতো চেলে বের করবার জন্য, তোমাদের সকলকে চেয়েছে৷ 32 কিন্তু শিমোন আমি তোমার জন্য প্রার্থনা করছি, য়েন তোমার বিশ্বাসে ভাঙ্গন না ধরে; আর তুমি যখন আবার পথে ফিরে আসবে তখন তোমার ভাইদের বিশ্বাসে শক্তিশালী করে তুলো৷’ 33 কিন্তু পিতর বললেন, ‘প্রভু, আমি আপনার সঙ্গে কারাগারে য়েতে, এমনকি মরতেও প্রস্তুত৷’ 34 যীশু বললেন, ‘পিতর আমি তোমায় বলছি, আজ রাতে মোরগ ডাকার আগেই তুমি তিনবার অস্বীকার করে বলবে য়ে তুমি আমায় চেন না৷’ 35 এরপর যীশু তাঁর প্রেরিতদের বললেন, ‘আমি যখন টাকার থলি, ঝুলি ও জুতো ছাড়াই তোমাদের প্রচারে পাঠিয়েছিলাম তখন কি তোমাদের কোন কিছুর অভাব হয়েছিল?’তাঁরা বললেন, ‘না, কিছুতেই অভাব হয় নি৷’ 36 যীশু তাঁদের বললেন, ‘কিন্তু এখন বলছি, যার টাকার থলি বা ঝুলি আছে সে তা নিয়ে যাক; আর যার কাছে তলোযার নেই সে তার পোশাক বিক্রি করে একটা তলোযার কিনুক৷ 37 কারণ আমি তোমাদের বলছি:‘তিনি রোগীদের একজন বলে গন্য হবেন৷’যিশাইয় 53:12শাস্ত্রের এই য়ে কথা তা অবশ্যই আমাতে পূর্ণ হবে: হ্যাঁ, আমার বিষয়ে এই য়ে কথা লেখা আছে তা পূর্ণ হতে চলেছে৷’ 38 তাঁরা বললেন, ‘প্রভু, দেখুন দুটি তলোযার আছে!’তিনি তাঁদের বললেন, ‘থাক, এই যথেষ্ট৷’ 39 এরপর তিনি তাঁর নিয়ম অনুসারে জৈতুন পর্বতমালায় চলে গেলেন৷ শিষ্যরা তাঁর পেছন পেছনে চললেন৷ সেই জায়গায় পৌঁছে তিনি তাঁদের বললেন, ‘প্রার্থনা কর য়েন তোমরা প্রলোভনে না পড়৷’ 40 41 পরে তিনি শিষ্যদের থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করতে লাগলেন৷ 42 তিনি বললেন, পিতা যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে এই পানপাত্র আমার কাছ থেকে সরিয়ে নাও৷ হ্যাঁ, তবুও আমার ইচ্ছা নয়, তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক্!’ 43 এরপর স্বর্গ থেকে একজন স্বর্গদূত এসে তাঁকে শক্তি জোগালেন৷ 44 নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণার সঙ্গে যীশু আরও আকুলভাবে প্রার্থনা করতে লাগলেন৷ সেই সময় তাঁর গা দিয়ে রক্তের বড় বড় ফোঁটার মতো ঘাম ঝরে পড়ছিল৷ 45 প্রার্থনা থেকে উঠে তিনি শিষ্যদের কাছে এসে দেখলেন, মনের দুঃখে অবসন্ন হয়ে তারা সকলে ঘুমিয়ে পড়েছেন৷ 46 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা ঘুমাচ্ছ কেন? ওঠ, প্রার্থনা কর য়েন প্রলোভনে না পড়৷’ 47 তিনি তখনও কথা বলছেন, সেই সময় যিহূদার নেতৃত্বে একদল লোক সেখানে এসে হাজির হল৷ যিহূদা চুমু দিয়ে অভিবাদন করার জন্য যীশুর দিকে এগিয়ে গেল৷ 48 যীশু তাকে বললেন, ‘যিহূদা তুমি কি চুমু দিয়ে মানবপুত্রকে ধরিয়ে দেবে?’ 49 যীশুর চারপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা তখন বুঝতে পারলেন কি ঘটতে চলেছে৷ তাঁরা বললেন, ‘প্রভু, আমরা কি তলোযার নিয়ে ওদের আক্রমণ করব?’ 50 তাঁদের মধ্যে একজন মহাযাজকের চাকরের ডান কান কেটে ফেললেন৷ 51 এই দেখে যীশু বললেন, ‘থামো! খুব হয়েছে৷’ আর তিনি সেই চাকরের কান স্পর্শ করে তাকে সুস্থ করলেন৷ 52 এরপর যীশু, যাঁরা তাঁকে ধরতে এসেছিল, সেই প্রধান যাজক, মন্দির রক্ষী বাহিনীর পদস্থ কর্মচারীদের ও ইহুদী সমাজপতিদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘ডাকাত ধরতে লোকে য়েমন বের হয় তোমরাও কি সেরকম ছোরা ও লাঠি নিয়ে আমাকে ধরতে এসেছ? 53 প্রত্যেক দিনই তো আমি তোমাদের হাতে মন্দিরেই ছিলাম, তখন তো তোমরা আমায় স্পর্শ কর নি, কিন্তু এই তোমাদের সময়, অন্ধকারের রাজত্বের এই তো সময়৷’ 54 তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করে মহাযাজকের বাড়িতে নিয়ে চলল৷ পিতর কিন্তু দূরত্ব বজায় রেখে তাদের পেছনে পেছনে চললেন৷ 55 মহাযাজকের বাড়ির উঠোনের মাঝখানে লোকেরা আগুন জে্বলে তার চারপাশে বসল, পিতরও তাদের সঙ্গে বসলেন৷ 56 একজন চাকরাণী দেখল য়ে পিতর সেই আগুনের ধারে বসেছেন৷ সে পিতরকে খুব ভালভাবে দেখে নিয়ে বলল, ‘আরে, এই লোকটাও তো ওর সঙ্গী ছিল!’ 57 কিন্তু পিতর অস্বীকার করে বললেন, ‘এই মেয়ে, আমি ওঁকে চিনি না৷’ 58 এর কিছুক্ষণ পরে আর একজন পিতরকে দেখে বলল, ‘আরে, তুমিও তো ওদেরই দলের একজন!’কিন্তু পিতর বললেন, ‘না, মশায়, আমি নই৷’ 59 এর প্রায় একঘন্টা পরে আর একজন বেশ জোর দিয়ে বলল, ‘নিঃসন্দেহে এ লোকটা ওরই সঙ্গী ছিল, কারণ এ তো একজন গালীলীয়!’ 60 কিন্তু পিতর বললেন, ‘মশায়, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, আপনি কি বলছেন৷’পিতরের কথা শেষ না হতেই একটা মোরগ ডেকে উঠল৷ 61 তখন প্রভু মুখ ফিরিয়ে পিতরের দিকে তাকালেন, আর প্রভুর কথা পিতরের মনে পড়ে গেল, প্রভু বলেছিলেন, ‘আজ রাতে মোরগ ডাকার আগে, তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷’ 62 তখন তিনি বাইরে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন৷ 63 যাঁরা যীশুকে পাহারা দিচ্ছিল, তারা এই সময় তাঁকে বিদ্রূপ করতে ও মারতে শুরু করল৷ তারা যীশুর চোখ বেঁধে দিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতে লাগল, ‘ভাববাণী বল দেখি, কে তোকে মারল!’ 64 65 তাঁকে অপমান করার জন্য তারা অনেক কথা বলল৷ 66 দিন শুরু হলে প্রবীন নেতারা, প্রধান যাজরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা সকলে মিলে সভা ডাকল আর সেই সভায় তারা যীশুকে হাজির করল৷ 67 তারা বলল, ‘তুমি যদি খ্রীষ্ট হও, তবে আমাদের বল!’ যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যদি বলি, তোমরা আমার কথায় বিশ্বাস করবে না: 68 আর আমি যদি তোমাদের কিছু জিজ্ঞেস করি, তোমরা তার জবাব দেবে না৷ 69 কিন্তু মানবপুত্র এখন থেকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ডানদিকে বসে থাকলেন৷’ 70 তখন তারা সকলে বলল, ‘তাহলে তুমি ঈশ্বরের পুত্র?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘তোমরা ঠিকই বলেছ য়ে আমি সেই৷’ 71 তারা বলল, ‘আমাদের আর অন্য সাক্ষ্যের কি দরকার? আমরা তো ওর নিজের মুখের কথাই শুনলাম৷’
1 এরপর তারা সকলে উঠে প্রভু যীশুকে নিয়ে পীলাতের কাছে গেল৷ 2 আর তারা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলল, ‘আমরা দেখেছি, লোকটা আমাদের জাতিকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে৷ এ কৈসরকে কর দিতে বারণ করে আর বলে, সে নিজেই খ্রীষ্ট, একজন রাজা৷’ 3 তখন পীলাত যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’ যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি নিজেই সে কথা বললে৷’ 4 এরপর পীলাত প্রধান যাজক ও লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘এই লোকের বিরুদ্ধে কোন দোষই আমি খুঁজে পাচ্ছি না৷’ 5 কিন্তু তারা জেদ ধরে বলতে লাগল, ‘এই লোকটি যিহূদার সমস্ত জায়গায় শিক্ষা দিয়ে লোকদের ক্ষেপিয়ে তুলছে৷ গালীল থেকে শুরু করে এখন সে এখানে এসেছে৷’ 6 এই কথা শুনে পীলাত জানতে চাইলেন যীশু গালীলের লোক কিনা? 7 তিনি যখন জানতে পারলেন য়ে হেরোদের শাসনাধীনে য়ে অঞ্চল আছে যীশু সেখানকার লোক, তখন তিনি যীশুকে হেরোদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, কারণ হেরোদ তখন জেরুশালেমেই ছিলেন৷ 8 রাজা হেরোদ যীশুকে দেখে খুবই খুশী হলেন, কারণ তিনি অনেকদিন থেকেই তাঁকে দেখতে চাইছিলেন৷ তাঁর বিষয়ে হেরোদ অনেক কথাই শুনেছিলেন এবং আশা করেছিলেন য়ে যীশু কোন অলৌকিক কাজ করে তাঁকে দেখাবেন৷ 9 তিনি যীশুকে অনেক প্রশ্ন করলেন; কিন্তু যীশু তাকে কোন উত্তরই দিলেন না৷ 10 প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সেখানে দাঁড়িয়ে প্রবলভাবে যীশুর বিরুদ্ধে দোষারোপ করতে লাগল৷ 11 হেরোদ তার সৈন্যদের নিয়ে যীশুকে নানাভাবে অপমান ও উপহাস করলেন৷ পরে একটা সুন্দর আলখাল্লা পরিয়ে তাঁকে আবার পীলাতের কাছে পাঠিয়ে দিলেন৷ 12 এর আগে পীলাত ও হেরোদ পরস্পর শত্রু ছিলেন; কিন্তু ঐ দিন তাঁরা পরস্পর আবার বন্ধু হয়ে গেলেন৷ 13 পীলাত প্রধান যাজকদের ও ইহুদী নেতাদের ডেকে বললেন, 14 ‘তোমরা আমার কাছে এই লোকটিকে নিয়ে এসে বলছ য়ে এ লোকদের বিপথে চালিত করছে৷ তোমাদের সামনেই আমি ভালভাবে একে জেরা করে দেখলাম; আর তোমরা এর বিরুদ্ধে য়ে অভিযোগ করছ তার কোন প্রমাণই পেলাম না, সে নির্দোষ৷ 15 এমন কি রাজা হেরোদও পান নি, তাই তিনি একে আবার আমাদের কাছে ফেরত পাঠিয়েছেন৷ আর দেখ, মৃত্যুদণ্ডে র য়োগ্য কোন কাজই এ করে নি৷ 16 তাই একে আমি আচ্ছা করে চাবুক মেরে ছেড়ে দেব৷’ 17 18 কিন্তু তারা সকলে এক সঙ্গে চিত্কার করে বলে উঠল, ‘এই লোকটাকে দূর কর! আমাদের জন্য বারাব্বাকে ছেড়ে দাও!’ 19 শহরের মধ্যে গণ্ডগোল বানানো ও হত্যার অপরাধে বারাব্বাকে কারাবন্দী করা হয়েছিল৷ 20 পীলাত যীশুকে ছেড়ে দিতে চাইলেন, তাই তিনি আবার লোকদের বোঝাতে চেষ্টা করলেন৷ 21 কিন্তু তারা চিত্কার করেই চলল, ‘ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দাও৷’ 22 পীলাত তৃতীয় বার তাদের বললেন, ‘কেন? এই লোক কি অপরাধ করেছে? মৃত্যুদণ্ড দেবার মতো কোন দোষই তো এর আমি দেখছি না, তাই একে আমি চাবুক মেরে ছেড়ে দেব৷’ 23 কিন্তু তারা প্রচণ্ড চিত্কার করেই চলল, তাঁকে য়েন ক্রুশে দেওযা হয়, এই দাবিতে তারা অনড় থাকল৷ আর শেষ পর্যন্ত তাদের চিত্কারেরই জয় হল৷ 24 পীলাত তাদের অনুরোধ রক্ষা করবেন বলে ঠিক করলেন৷ 25 যাকে বিদ্রোহ ও খুনের অপরাধে কারাগারে রাখা হয়েছিল তাকেই তিনি মুক্তি দিলেন, আর যীশুকে তাদের হাতে তুলে দিলেন য়েন তাকে নিয়ে তারা যা চায় তা করতে পারে৷ 26 তারা যখন যীশুকে নিয়ে যাচ্ছিল তখন কুরীশীর শহরের শিমোন নামে একজন লোককে সৈন্যরা ধরল, সে তখন মাঠ থেকে আসছিল৷ তারা সেই ক্রুশটা তার ঘাড়ে চাপিয়ে যীশুর পেছনে পেছনে সেটা বয়ে নিয়ে য়েতে তাকে বাধ্য করল৷ 27 এক বিরাট জনতা তার পেছনে পেছনে যাচ্ছিল, তাদের মধ্যে কিছু স্ত্রীলোকও ছিল যাঁরা যীশুর জন্য কান্নাকাটি ও হা-হুতাশ করতে করতে যাচ্ছিল৷ 28 যীশু তাদের দিকে ফিরে বললেন, ‘হে জেরুশালেমের মেয়েরা, তোমরা আমার জন্য কেঁদো না, বরং নিজেদের জন্য ও তোমাদের সন্তানদের জন্য কাঁদ৷ 29 কারণ এমন দিন আসছে যখন লোকে বলবে, ‘বন্ধ্যা স্ত্রীলোকেরাই ধন্য! আর ধন্য সেই সব গর্ভ যা কখনও সন্তান প্রসব করে নি, ধন্য সেই সব স্তন যা কখনও শিশুদেব পান করায় নি৷’ 30 সেই সময় লোকে কে বলবে, ‘আমাদের ওপরে পড়!’তারা ছোট ছোট পাহাড়কে বলবে, ‘আমাদের চাপা দাও!’ 31 কারণ গাছ সবুজ থাকতেই যদি লোকে এরকম করে, তবে গাছ যখন শুকিয়ে যাবে তখন কি করবে?’ 32 দুজন অপরাধীকে তাঁর সঙ্গে মৃত্যুদণ্ড দেওযার জন্য নিয়ে যাওযা হচ্ছিল৷ 33 তারা ‘মাথার খুলি’ নামে একটা জায়গায় এসে পৌঁছাল, সেখানে ঐ দুজন অপরাধীর সঙ্গে তারা যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করল৷ তারা একজনকে তাঁর বাঁদিকে, আর অন্যজনকে তাঁর ডানদিকে ক্রুশে টাঙিয়ে দিল৷ 34 তখন যীশু বললেন, ‘পিতা, এদের ক্ষমা কর, কারণ এরা য়ে কি করছে তা জানে না৷’তারা পাশার ঘুঁটি চেলে গুলিবাঁট করে নিজেদের মাঝে তাঁর পোশাকগুলি ভাগ করে নিল৷ 35 লোকেরা সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখছিল, ইহুদী নেতারা ব্যঙ্গ করে তাঁকে বলতে লাগল, ‘ওতো অন্যদের বাঁচাতো ও যদি ঈশ্বরের মনোনীত সেই খ্রীষ্ট হয় তবে এখন নিজেকে বাঁচাক দেখি!’ 36 সৈন্যরা তাঁর কাছে এগিয়ে এসে তাঁকে উপহাস করতে লাগল৷ তারা পান করার সিরকা এগিয়ে দিয়ে যীশুকে বলল, 37 ‘তুই যদি ইহুদীদের রাজা, তবে নিজেকে বাঁচা দেখি!’ 38 তারা একটা ফলকে ‘এ ইহুদীদের রাজা’ লিখে যীশুর ক্রুশের ওপর তা লটকে দিল৷ 39 তাঁর দুপাশে যাঁরা ক্রুশের ওপর ঝুলছিল, তাদের মধ্যে একজন তাঁকে বিদ্রূপ করে বলল, ‘তুমি না খ্রীষ্ট? আমাদেরকে ও নিজেকে বাঁচাও দেখি!’ 40 কিন্তু অন্য জন তাকে ধমক দিয়ে বলল, ‘তুমি কি ঈশ্বরকে ভয় কর না? তুমি তো একই রকম শাস্তি পাচ্ছ৷ 41 আমরা য়ে শাস্তি পাচ্ছি তা ন্যায়, কারণ আমরা যা করেছি তার য়োগ্য শাস্তিই পাচ্ছি; কিন্তু ইনি তো কোন অন্যায় করেন নি৷’ 42 এরপর সে বলল, ‘যীশু আপনি যখন আপনার রাজ্যে আসবেন তখন আমার কথা মনে রাখবেন৷’ 43 যীশু তাকে বললেন, ‘আমি তোমায় সত্যি বলছি, তুমি আজকেই আমার সঙ্গে পরমদেশে উপস্থিত হবে৷’ 44 তখন বেলা প্রায় বারোটা; আর সেই সময় থেকে তিনটা পর্যন্ত সমস্ত দেশ অন্ধকারে ছেয়ে গেল৷ 45 সেই সময় সূর্যের আলো দেখা গেল না; আর মন্দিরের মধ্যে ভারী পর্দাটা মাঝখানে থেকে চিরে দুভাগ হয়ে গেল৷ 46 যীশু চিত্কার করে বললেন, ‘পিতা আমি তোমার হাতে আমার আত্মাকে সঁপে দিচ্ছি৷’ এই কথা বলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ফেললেন৷ 47 সেখানে উপস্থিত শতপতি এইসব ঘটনা দেখে ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলে উঠলেন, ‘ইনি সত্যিই নির্দোষ ছিলেন!’ 48 য়ে লোকেরা সেখানে জড়ো হয়েছিল, তারা এইসব ঘটনা দেখে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে সেখান থেকে চলে গেল৷ 49 কিন্তু যাঁরা যীশুর খুবই পরিচিত ছিলেন, তাঁরা শেষ পর্যন্ত কি ঘটে দেখার জন্য দূরে দাঁড়িয়ে রইলেন৷ য়ে সব স্ত্রীলোক গালীল থেকে যীশুর সঙ্গে এসেছিলেন, তাঁরাও এদের মধ্যে ছিলেন৷ 50 সেখানে য়োষেফ নামে একজন লোক ছিলেন, তিনি ছিলেন ইহুদী মহাসভার সভ্য়, ভাল ও দযালু ব্যক্তি৷ তিনি পরিষদের সিদ্ধান্ত ও কার্য়কলাপের সঙ্গে একমত হননি৷ যিহূদার আরিমাথিযার শহর থেকে তিনি এসেছিলেন এবং ঈশ্বরের রাজ্যের আগমণের প্রতীক্ষায় ছিলেন৷ 51 52 য়োষেফ পীলাতের কাছে গিয়ে যীশুর মৃতদেহটি চাইলেন৷ 53 পরে যীশুর দেহটি ক্রুশের ওপর থেকে নামিয়ে নিয়ে একটি মসলিন কাপড়ে তা জড়ালেন৷ এরপর পাহাড়ের গা কেটে গর্ত করা একটি সমাধিগুহার মধ্যে দেহটি শুইয়ে রাখলেন৷ এই সমাধি সম্পূর্ণ নতুন ছিল, এর আগে কাউকে কখনও এখনে কবর দেওযা হয় নি৷ 54 সেই দিনটা ছিল বিশ্রামবারের আযোজনের দিন, আর বিশ্রামবার প্রায় শুরু হয়ে গিয়েছিল৷ 55 য়ে স্ত্রীলোকেরা যীশুর সঙ্গে সঙ্গে গালীল থেকে এসেছিলেন, তাঁরা য়োষেফের সঙ্গে গেলেন, আর সেই সমাধিটি ও তার মধ্যে কিভাবে যীশুর দেহ শাযিত রাখা হল তা দেখলেন৷ 56 এরপর তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়ে বিশেষ এক ধরণের সুগন্ধি তেল ও মশলা তৈরী করলেন৷ বিশ্রামবারে তাঁরা বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে কাজকর্ম বন্ধ রাখলেন৷
1 সপ্তাহের প্রথম দিন, সেই স্ত্রীলোকেরা খুব ভোরে ঐ সমাধিস্থলে এলেন৷ তাঁরা য়ে গন্ধদ্রব্য ও মশলা তৈরী করেছিলেন তা সঙ্গে আনলেন৷ 2 তাঁরা দেখলেন সমাধিগুহার মুখ থেকে পাথরখানা একপাশে গড়িয়ে দেওযা আছে; 3 কিন্তু ভেতরে ঢুকে সেখানে প্রভু যীশুর দেহ দেখতে পেলেন না৷ 4 তাঁরা যখন অবাক বিস্ময়ে সেই কথা ভাবছেন, সেই সময় উজ্জ্বল পোশাক পরে দুজন ব্যক্তি হঠাত্ এসে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন৷ 5 ভয়ে তাঁরা মুখ নীচু করে নতজানু হয়ে রইলেন৷ ঐ দুজন তাঁদের বললেন, ‘যিনি জীবিত, তোমরা তাঁকে মৃতদের মাঝে খুঁজছ কেন? 6 তিনি এখানে নেই, তিনি পুনরুত্থিত হয়েছন৷ তিনি যখন গালীলে ছিলেন তখন তোমাদের কি বলেছিলেন মনে করে দেখ৷ 7 তিনি বলেছিলেন, মানবপুত্রকে অবশ্যই পাপী মানুষদের হাতে ধরিয়ে দেওযা হবে, তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ হতে হবে; আর তিন দিনের দিন তিনি আবার মৃত্যুর মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন৷’ 8 তখন যীশুর সব কথা তাঁদের মনে পড়ে গেল৷ 9 তারপর তাঁরা সমাধিগুহা থেকে ফিরে এসে সেই এগারো জন প্রেরিতকে ও তাঁর অনুগামীদের এই ঘটনার কথা জানালেন৷ 10 এই স্ত্রীলোকেরা হলেন মরিয়ম মগ্দলীনী, য়োহানা আর যাকোবের মা মরিয়ম৷ তাঁদের সঙ্গে আরো কয়েকজন এই সব ঘটনা প্রেরিতদের জানালেন৷ 11 কিন্তু প্রেরিতদের কাছে সে সব প্রলাপ বলে মনে হল, তাঁরা সেই স্ত্রীলোকদের কথা বিশ্বাস করলেন না৷ 12 কিন্তু পিতর উঠে দৌড়ে সমাধিগুহার কাছে গেলেন৷ তিনি নীচু হয়ে ঝুঁকে পড়ে দেখলেন, কেবল যীশুর দেহে জড়ানো কাপড়গুলো সেখানে পড়ে আছে; আর যা ঘটেছে তাতে আশ্চর্য হয়ে ঘরে ফিরে গেলেন৷ 13 ঐ দিনই দুজন অনুগামী জেরুশালেম থেকে সাত মাইল দূরে ইম্মাযু নামে একটি গ্রামে যাচ্ছিলেন৷ 14 এই য়ে সব ঘটনাগুলি ঘটে গেল, য়েতে য়েতে তাঁরা সে বিষয়েই পরস্পর আলোচনা করছিলেন৷ 15 তাঁরা যখন এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন, এমন সময় যীশু নিজে এসে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলেন৷ 16 ঘটনাটি এমনভাবেই ঘটল যাতে তাঁরা যীশুকে চিনতে না পারেন৷ 17 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা য়েতে য়েতে পরস্পর কি নিয়ে আলোচনা করছ?’তাঁরা থমকে দাঁড়ালেন, তাঁদের খুবই বিপন্ন দেখাচ্ছিল৷ 18 তাঁদের মধ্যে ক্লিয়পা নামে একজন তাঁকে বললেন, ‘জেরুশালেমের অধিবাসীদের মধ্যে আমাদের মনে হয় আপনিই একমাত্র লোক, যিনি জানেন না গত কদিনে সেখানে কি কাণ্ডটাই না ঘটে গেছে৷’ 19 যীশু তাঁদের বললেন, ‘কি ঘটেছে, তোমরা কিসের কথা বলছ?’ তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে বলছি৷ তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি তাঁর কথা ও কাজের শক্তিতে ঈশ্বর ও সমস্ত মানুষের চোখে নিজেকে এক মহান ভাববাদীরূপে প্রমাণ করেছেন৷ 20 কিন্তু আমাদের প্রধান যাজকরা ও নেতারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবার জন্য ধরিয়ে দিল, তারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারল৷ 21 আমরা আশা করেছিলাম য়ে তিনিই সেই যিনি ইস্রায়েলকে মুক্ত করবেন৷ কেবল তাই নয়, আজ তিন দিন হল এসব ঘটে গেছে৷ 22 আবার আমাদের মধ্যে কয়েকজন স্ত্রীলোক আমাদের অবাক করে দিলেন৷ তাঁরা আজ খুব ভোরে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; 23 কিন্তু সেখানে তাঁরা যীশুর দেহ দেখতে পান নি৷ সেখান থেকে ফিরে এসে তাঁরা আমাদের বললেন য়ে তাঁরা স্বর্গদূতদের দর্শন পেয়েছেন, আর সেই স্বর্গদূতেরা তাঁদের বলেছেন য়ে যীশু জীবিত৷ 24 এরপর আমাদের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন সেই সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; আর তাঁরা দেখলেন স্ত্রীলোকেরা যা বলেছেন তা সত্য৷ কিন্তু তাঁরা যীশুকে সেখানে দেখতে পান নি৷’ 25 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা সত্যি কিছু বোঝ না, তোমাদের মন বড়ই অসাড়, তাই ভাববাদীরা যা কিছু বলে গেছেন তোমরা তা বিশ্বাস করতে পার না৷ 26 খ্রীষ্টের মহিমায় প্রবেশ লাভের পূর্বে কি তাঁর এইসব কষ্টভোগ করার একান্ত প্রযোজন ছিল না?’ 27 আর তিনি মোশির পুস্তক থেকে শুরু করে ভাববাদীদের পুস্তকে তাঁর বিষয়ে যা যা লেখা আছে, শাস্ত্রের সে সব কথা তাঁদের বুঝিয়ে দিলেন৷ 28 তাঁরা য়ে গ্রামে যাচ্ছিলেন তার কাছাকাছি এলে পর যীশু আরো দূরে যাবার ভাব দেখালেন৷ 29 তখন তাঁরা যীশুকে খুব অনুরোধ করে বললেন, ‘দেখুন, বেলা পড়ে গেছে, এখন সন্ধ্যা হয়ে এল, আপনি আমাদের এখানে থেকে যান৷’ তাই তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকবার জন্য ভেতরে গেলেন৷ 30 তিনি যখন তাঁদের সঙ্গে খেতে বসলেন, তখন রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন৷ পরে সেই রুটি টুকরো টুকরো করে তাঁদের দিলেন৷ 31 সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চোখ খুলে গেল, তাঁরা যীশুকে চিনতে পারলেন, আর তিনি সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন৷ 32 তখন তাঁরা পরস্পর বলাবলি করলেন, ‘তিনি যখন রাস্তায় আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ও শাস্ত্র থেকে আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের অন্তর কি আবেগে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে নি?’ 33 তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে উঠে জেরুশালেমে গেলেন৷ সেখানে তাঁরা সেই এগারোজন প্রেরিত ও তাদের সঙ্গে আরো অনেককে দেখতে পেলেন৷ 34 প্রেরিত ও অন্যান্য যাঁরা সেখানে ছিলেন তাঁরা বললেন, ‘প্রভু, সত্যি জীবিত হয়ে উঠেছেন৷ তিনি শিমোনকে দেখা দিয়েছেন৷’ 35 তখন সেই দুজন অনুগামীও রাস্তায় যা ঘটেছিল তা তাঁদের কাছে ব্যক্ত করলেন৷ আর যীশু যখন রুটি টুকরো টুকরো করছিলেন তখন কিভাবে তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন তাও জানালেন৷ 36 তাঁরা যখন এসব কথা তাদের বলছেন, এমন সময় যীশু তাঁদের মাঝে এসে দাঁড়ালেন আর বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক্!’ 37 কিন্তু তাঁরা ভয়ে চমকে উঠলেন৷ তাঁরা মনে করলেন বোধ হয় কোন ভূত দেখছেন৷ 38 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা এত অস্থির হচ্ছ কেন? আর তোমাদের মনে সন্দেহই বা জাগছে কেন? 39 আমার হাত ও পা দেখ, আমার স্পর্শ করে দেখ, আত্মার এইরূপ হাড় মাংস থাকে না, কিন্তু তোমরা দেখতে পাচ্ছ আমার আছে৷’ 40 এই কথা বলে তিনি তাঁদের হাত ও পা দেখালেন৷ 41 তাঁদের এতই আনন্দ হয়েছিল ও য়ে তাঁরা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না৷ তাঁরা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন৷ যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে কিছু খাবার আছে কি? 42 তাঁরা তাঁকে এক টুকরো ভাজা মাছ দিলেন৷ 43 তিনি সেটি নিয়ে তাঁদের সামনে গেলেন৷ 44 তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমি যখন তোমাদের সঙ্গে ছিলাম, তখনই তোমাদের এসব কথা বলেছিলাম, আমার সম্বন্ধে মোশির বিধি-ব্যবস্থায়, ভাববাদীদের পুস্তকে ও গীতসংহিতায় যা কিছু লেখা হয়েছে তা পূর্ণ হতেই হবে৷’ 45 এরপর তিনি তাঁদের বুদ্ধি খুলে দিলেন, য়েন তাঁরা শাস্ত্রের কথা বুঝতে পারেন৷ 46 যীশু তাঁদের বললেন, ‘একথা লেখা আছে খ্রীষ্টকে অবশ্যই কষ্ট ভোগ করতে হবে, আর তিনি মৃত্যুর তিন দিনের দিন মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন৷’ 47 এবং পাপের জন্য অনুশোচনা ও পাপের ক্ষমার কথা অবশ্যই সমস্ত জাতির কাছে ঘোষণা করা হবে, জেরুশালেম থেকেই একাজ শুরু হবে আর তোমরাই এসবের সাক্ষী৷ 48 49 আমার পিতা যা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আমি তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব; কিন্তু তোমরা য়ে পর্যন্ত না উর্দ্ধ থেকে আসা শক্তি পরিধান করছ, সেই পর্যন্ত এই শহরেই থাক৷ 50 এরপর যীশু তাঁদের বৈথনিযা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন এবং হাত তুলে তাদের আশীর্বাদ করলেন৷ 51 তিনি আশীর্বাদ করতে করতে তাঁদের ছেড়ে আকাশে উঠে য়েতে লাগলেন আর স্বর্গে উন্নীত হলেন৷ 52 শিষ্যরা যীশুকে প্রণাম জানিয়ে মহানন্দের সঙ্গে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন৷ 53 আর সর্বক্ষণ মন্দিরে উপস্থিত থেকে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন৷
1 আদিতে বাক্যছিলেন, বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন আর সেই বাক্যই ঈশ্বর ছিলেন৷ 2 সেই বাক্য আদিতে ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন৷ 3 তাঁর মাধ্যমেই সব কিছুর সৃষ্টি হয়েছিল এবং এর মধ্যে তাঁকে ছাড়া কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় নি৷ 4 তাঁর মধ্যে জীবন ছিল; আর সেই জীবন জগতের মানুষের কাছে আলো নিয়ে এল৷ 5 সেই আলো অন্ধকারের মাঝে উজ্জ্বল হয়ে উঠল; আর অন্ধকার সেই আলোকে জয় করতে পারে নি৷ 6 একজন লোক এলেন তাঁর নাম য়োহন; ঈশ্বর তাঁকে পাঠিয়েছিলেন৷ 7 তিনি সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য সাক্ষী রূপে এলেন; যাতে তাঁর মাধ্যমে সকল লোক সেই আলোর কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারে৷ 8 য়োহন নিজে সেই আলো ছিলেন না; কিন্তু তিনি এসেছিলেন যাতে লোকদের কাছে সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারেন৷ 9 প্রকৃত য়ে আলো, তা সকল মানুষকে আলোকিত করতে পৃথিবীতে আসছিলেন৷ 10 সেই বাক্য জগতে ছিল এবং এই জগত তাঁর দ্বারাই সৃষ্ট হয়েছিল; কিন্তু জগত তাঁকে চিনতে পারে নি৷ 11 য়ে জগত তাঁর নিজস্ব সেখানে তিনি এলেন, কিন্তু তাঁর নিজের লোকেরাই তাঁকে গ্রহণ করল না৷ 12 কিন্তু কিছু লোক তাঁকে গ্রহণ করল এবং তাঁকে বিশ্বাস করল৷ যাঁরা বিশ্বাস করল তাদের সকলকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার দান করলেন৷ 13 ঈশ্বরের এই সন্তানরা প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে কোন শিশুর মতো জন্ম গ্রহণ করে নি৷ মা-বাবার দৈহিক কামনা-বাসনা অনুসারেও নয়, ঈশ্বরের কাছ থেকেই তাদের এই জন্ম৷ 14 বাক্য মানুষের রূপ ধারণ করলেন এবং আমাদের মধ্যে বসবাস করতে লাগলেন৷ পিতা ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র হিসাবে তাঁর য়ে মহিমা, সেই মহিমা আমরা দেখেছি৷ সে বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পরিপূর্ণ ছিলেন৷ 15 য়োহন তাঁর সম্পর্কে মানুষকে বললেন, ‘ইনিই তিনি য়াঁর সম্বন্ধে আমি বলেছি৷ ‘যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার থেকে মহান, কারণ তিনি আমার অনেক আগে থেকেই আছেন৷” 16 সেই বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পূর্ণ ছিলেন৷ আমরা সকলে তাঁর থেকে অনুগ্রহের ওপর অনুগ্রহ পেয়েছি৷ 17 কারণ মোশির মাধ্যমে বিধি-ব্যবস্থা দেওযা হয়েছিল, কিন্তু অনুগ্রহ ও সত্যের পথ যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে এসেছে৷ 18 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি; কিন্তু একমাত্র পুত্র, যিনি পিতার কাছে থাকেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন৷ 19 জেরুশালেমের ইহুদীরা কয়েকজন যাজক ও লেবীয়কে য়োহনের কাছে পাঠালেন৷ তাঁরা এসে য়োহনকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কে?’ 20 য়োহন একথার জবাব খোলাখুলিভাবেই দিলেন; তিনি উত্তর দিতে অস্বীকার করলেন না৷ তিনি স্পষ্টভাবে স্বীকার করলেন, ‘আমি সেই খ্রীষ্ট নই৷’ 21 তখন তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাহলে আপনি কে? আপনি কি এলিয়?’য়োহন বললেন, ‘না, আমি এলিয় নই৷’ইহুদীরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘তবে আপনি কি সেই ভাববাদী?’য়োহন এর জবাবে বললেন, ‘না৷’ 22 তখন তাঁরা বললেন, ‘তাহলে আপনি কে? আমাদের বলুন যাতে যাঁরা আমাদের পাঠিয়েছে তাদের জবাব দিতে পারি৷ আপনার নিজের বিষয়ে আপনি কি বলেন?’ 23 ভাববাদী যিশাইয় যা বলেছিলেন তা উল্লেখ করে য়োহন বললেন,‘আমি তাঁর রব, যিনি মরু প্রান্তরে চিত্কার করে বলছেন, ‘তোমার প্রভুর জন্য পথ সোজা কর!” যিশাইয় 40:3 24 যাদের পাঠানো হয়েছিল তাদের মধ্যে কিছু ফরীশী সম্প্রদায়ের লোক ছিল৷ 25 তাঁরা য়োহনকে বললেন, ‘আপনি যদি সেই খ্রীষ্ট নন, এলিয় নন, ভাববাদীও নন, তাহলে আপনি বাপ্তাইজ করছেন কেন?’ 26 এর উত্তরে য়োহন বললেন, ‘আমি জলে বাপ্তাইজ করছি৷ তোমাদের মধ্যে একজন দাঁড়িয়ে আছেন যাঁকে তোমরা চেন না৷ 27 তিনিই সেই লোক যিনি আমার পরে আসছেন৷ আমি তাঁর পায়ের চটির ফিতে খোলবার য়োগ্য নই৷’ 28 যর্দন নদীর অপর পারে বৈথনিযাতে য়েখানে য়োহন লোকেদের বাপ্তাইজ করছিলেন, সেইখানে এইসব ঘটেছিল৷ 29 পরের দিন য়োহন যীশুকে তাঁর দিকে আসতে দেখে বললেন, ‘ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপরাশি বহন করে নিয়ে যান! 30 ইনিই সেই লোক, য়াঁর বিষয়ে আমি বলেছিলাম, ‘আমার পরে একজন আসছেন, কিন্তু তিনি আমার থেকে মহান, কারণ তিনি আমার অনেক আগে থেকেই আছেন৷’ 31 এমনকি আমিও তাঁকে চিনতাম না, কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা য়েন তাঁকে খ্রীষ্ট বলে চিনতে পারে এইজন্য আমি এসে তাদের জলে বাপ্তাইজ করছি৷’ 32 এরপর য়োহন তাঁর সাক্ষ্যে বললেন, ‘আমি নিজেও খ্রীষ্ট কে তা জানতাম না৷ কিন্তু লোকদের জলে বাপ্তাইজ করতে ঈশ্বর আমাকে পাঠালেন৷ ঈশ্বর আমাকে বললেন, ‘তুমি দেখতে পাবে এক ব্যক্তির উপর পবিত্র আত্মা এসে অধিষ্ঠান করছেন৷ আর তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি পবিত্র আত্মাতে বাপ্তাইজ করবেন৷” য়োহন বললেন, ‘আমি পবিত্র আত্মাকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখেছি৷ সেই আত্মা কপোতের আকারে এসে যীশুর উপর বসলেন৷ 33 34 আমি তা দেখেছি আর তাই আমি লোকেদের বলি, ‘য়ে তিনিই ঈশ্বরের পুত্র৷” 35 পরদিন য়োহন তাঁর দুজন শিষ্য়ের সঙ্গে আবার সেখানে এলেন৷ 36 যীশুকে সেখান দিয়ে য়েতে দেখে তিনি বললেন, ‘ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক!’ 37 তাঁর সেই দুজন শিষ্য য়োহনের কথা শুনে যীশুর অনুসরণ করতে লাগলেন৷ 38 যীশু পিছন ফিরে সেই দুজনকে অনুসরণ করতে দেখে, তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কি চাও?’তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘রব্বি, আপনি কোথায় থাকেন?’ (‘রব্বি’ কথাটির অর্থ ‘গুরু৷’) 39 যীশু তাঁদের বললেন, ‘এস দেখবে৷’ তখন তাঁরা গিয়ে দেখলেন তিনি কোথায় থাকেন৷ আর সেই দিনের বাকি সময়টা তাঁরা যীশুর কাছে কাটালেন৷ তখন সময় ছিল প্রায় বিকাল চারটে৷ 40 য়োহনের কথা শুনে য়ে দুজন লোক যীশুর পিছনে পিছনে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন হচ্ছেন শিমোন পিতরের ভাই আন্দরিয়৷ 41 আন্দরিয় সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ভাই শিমোনের দেখা পেয়ে তাকে বললেন, ‘আমরা মশীহের দেখা পেয়েছি৷’ ‘মশীহ’ কথাটির অর্থ ‘খ্রীষ্ট৷’ 42 আন্দরিয়, শিমোন পিতরকে যীশুর কাছে নিয়ে এলেন৷ যীশু তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমি য়োহনের ছেলে শিমোন, তোমাকে কৈফা বলে ডাকা হবে৷’ ‘কৈফা’ কথাটির অর্থ ‘পিতর৷’ 43 পরের দিন যীশু গালীলে যাবেন বলে ঠিক করলেন৷ সেখানে তিনি ফিলিপের দেখা পেয়ে তাঁকে বললেন, ‘আমার অনুসরণ কর৷’ 44 আন্দরিয় ও পিতর য়ে অঞ্চলে থাকতেন ফিলিপ ছিলেন, সেই বৈত্সৈদার লোক৷ 45 ফিলিপ এবার নথনেলকে দেখতে পেয়ে বললেন, ‘আমরা এমন একজনের দেখা পেয়েছি যার কথা মোশি ও ভাববাদীরা বিধি-ব্যবস্থায় লিখে রেখে গেছেন৷ তিনি নাসরত্ নিবাসী য়োষেফের ছেলে যীশু৷’ 46 নথনেল তাঁকে বললেন, ‘নাসরত্! নাসরত্ থেকে কি ভাল কিছু আসতে পারে?’ফিলিপ বললেন, ‘এস দেখে যাও৷’ 47 যীশু দেখলেন নথনেল তাঁর দিকে আসছেন৷ তখন তিনি তাঁর বিষয়ে বললেন, ‘এই দেখ একজন প্রকৃত ইস্রায়েলীয়, যার মধ্যে কোন ছলনা নেই৷’ 48 নথনেল তাঁকে বললেন, ‘আপনি কেমন করে আমাকে চিনলেন?’এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘ফিলিপ আমার সম্পর্কে তোমায় বলার আগে তুমি যখন ডুমুর গাছের তলায় বসেছিলে, আমি তখনই তোমায় দেখেছিলাম৷’ 49 নথনেল বললেন, ‘রব্বি (গুরু), আপনিই ঈশ্বরের পুত্র, আপনিই ইস্রায়েলের রাজা৷’ 50 যীশু উত্তরে বললেন, ‘আমি তোমাকে ডুমুর গাছের তলায় দেখেছিলাম বলেই কি তুমি আমাকে বিশ্বাস করলে? এর চেয়েও আরো অনেক মহত্ জিনিস তুমি দেখতে পাবে!’ 51 পরে যীশু তাঁকে আরও বললেন, ‘সত্যি, সত্যিই আমি তোমাদের বলছি৷ তোমরা একদিন দেখবে স্বর্গ খুলে গেছে, আর ‘ঈশ্বরের দূতরা’ মানবপুত্রের ওপর দিয়ে উঠে যাচ্ছেন আর নেমে আসছেন৷’ 52
1 তৃতীয় দিনে গালীলের কান্না নগরে একটা বিয়ে হচ্ছিল এবং যীশুর মা সেখানে ছিলেন৷ 2 সেই বিয়ে বাড়িতে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল৷ 3 যখন সমস্ত দ্রাক্ষারস ফুরিয়ে গেল, তখন যীশুর মা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘এদের আর দ্রাক্ষারস নেই৷’ 4 যীশু বললেন, ‘হে নারী, তুমি আমায় কেন বলছ কি করা উচিত? আমার সময় এখনও আসেনি৷’ 5 তাঁর মা চাকরদের বললেন, ‘ইনি তোমাদের যা কিছু করতে বলেন তোমরা তাই কর৷’ 6 ইহুদী ধর্মের রীতি অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে হাত পা ধোযার জন্য সেই জায়গায় পাথরের ছটা জলের জালা বসানো ছিল৷ এই জালাগুলির প্রতিটিতে আশি থেকে একশ লিটার জল ধরত৷ 7 যীশু সেই চাকরদের বললেন, ‘এই জালাগুলিতে জল ভরে আন৷’ তখন তারা জালাগুলি কানায় কানায় ভরে দিল৷ 8 তারপর যীশু তাদের বললেন, ‘এর থেকে কিছুটা নিয়ে ভোজের কর্তার কাছে নিয়ে যাও৷’ তখন তারা তাই করল৷ 9 জল যা দ্রাক্ষারসে পরিণত হয়েছিল, ভোজের কর্তা তা আস্বাদ করলেন৷ সেই দ্রাক্ষারস কোথা থেকে এল তা তিনি জানতেন না; কিন্তু য়ে চাকরেরা জল এনেছিল তারা তা জানত৷ তারপর তিনি বরকে ডাকলেন৷ 10 তিনি বললেন, ‘সাধারণতঃ প্রথমে লোকে ভাল দ্রাক্ষারস পরিবেশন করে আর অতিথিরা যখন মাতাল হয়ে ওঠে তখন তাদের নিম্নমানের দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হয়, অথচ আমি দেখছি তোমরা ভাল দ্রাক্ষারস এখনও রেখে দিয়েছ৷’ 11 এই প্রথম অলৌকিক চিহ্ন করে গালীলের কান্না নগরে যীশু তাঁর মহিমা প্রকাশ করলেন; আর তাঁর শিষ্যেরা তাঁর ওপর বিশ্বাস করল৷ 12 পরে তিনি তাঁর মা, ভাইদের ও শিষ্যদের সঙ্গে কফরনাহূম শহরে গেলেন৷ সেখানে তাঁরা অল্প কিছু দিন থাকলেন৷লূক 19:45-46) 13 ইহুদীদের নিস্তারপর্ব পালনের সময় এগিয়ে এলে যীশু জেরুশালেমে গেলেন৷ 14 তিনি দেখলেন মন্দিরের মধ্যে লোকেরা গরু, ভেড়া ও পায়রা বিক্রি করছে; আর পোদ্দাররা বসে আছে, এরা লোকের টাকা নিয়ে বদল ও ব্যবসা করত৷ 15 তখন তিনি কিছু দড়ি দিয়ে একটা চাবুক তৈরী করে তা দিয়ে গরু, ভেড়া সমেত এই সব লোকদের মন্দির চত্বর থেকে বের করে দিলেন; আর পোদ্দারদের টাকা পয়সা সব ছড়িয়ে টেবিল উল্টিয়ে দিলেন৷ 16 যাঁরা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের বললেন, ‘এখান থেকে এসব নিয়ে যাও! আমার পিতার এই গৃহকে বাজারে পরিণত কোরো না!’ 17 তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল শাস্ত্রে লেখা আছে:’তোমার গৃহের প্রতি আমার উত্সাহ আমাকে গ্রাস করবে৷’গীতসংহিতা 69:9 18 ইহুদীরা তখন এর জবাবে তাঁকে বলল, ‘তোমার য়ে এসব করার অধিকার আছে তার প্রমাণ স্বরূপ কি কোন অলৌকিক চিহ্ন আমাদের দেখাতে পার? 19 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা এই মন্দির ভেঙ্গে ফেল, আমি তিন দিনের মধ্যে একে আবার গড়ে তুলব৷’ 20 তখন ইহুদীরা বলল, ‘এই মন্দির নির্মাণ করতে ছেচল্লিশ বছর লেগেছিল; আর তুমি কিনা তিন দিনের মধ্যে এটা গড়ে তুলবে?’ 21 কিন্তু য়ে মন্দিরের কথা তিনি বলছিলেন তা হচ্ছে তাঁর দেহ৷ 22 যখন তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হলেন, তখন তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল য়ে তিনি এই কথাই বলেছিলেন, তখন তাঁরা যীশুর বিষয়ে শাস্ত্রের কথা ও যীশুর বাক্য়ে বিশ্বাস করলেন৷ 23 নিস্তারপর্বের জন্য যীশু যখন জেরুশালেমে ছিলেন, তখন বহুলোক তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, কারণ যীশু সেখানে য়েসব অলৌকিক চিহ্নকার্য় করছিলেন তা তারা দেখল৷ 24 কিন্তু যীশু নিজে তাদের ওপর কোন আস্থা রাখেন নি, কারণ তিনি এই সব লোকদের ভালভাবেই জানতেন৷ 25 কোন লোকের কাছ থেকে মানুষের সম্বন্ধে কিছু জানার তাঁর প্রযোজন ছিল না, কারণ মানুষের অন্তরে কি আছে তিনি তা জানতেন৷
1 ফরীশীদের মধ্যে নীকদীম নামে একজন লোক ছিলেন৷ তিনি ইহুদী সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা৷ 2 একদিন রাতে তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, ‘রব্বি (গুরু), আমরা জানি আপনি একজন শিক্ষক, ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন৷ ঈশ্বর সহায় না হলে কেউ কি ঐরূপ অলৌকিক কাজ করতে পারে, যা আপনি করছেন?’ 3 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, নতুন জন্ম না হলে কোন ব্যক্তি ঈশ্বরের রাজ্য দেখতে পাবে না৷’ 4 নীকদীম তাঁকে বললেন, ‘মানুষ বৃদ্ধ হয়ে গেলে কেমন করে তার আবার নতুন জন্ম হতে পারে? সে নিশ্চয়ই দ্বিতীয় বার মায়ের গর্ভে প্রবেশ করে আবার জন্মাতে পারে না!’ 5 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি কোন লোক জল ও আত্মা থেকে না জন্মায়, তবে সে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না৷ 6 শরীর থেকেই শরীরের জন্ম হয় আর আত্মা থেকে জন্ম হয় আধ্যাত্মিকতার৷ 7 আমি তোমাকে যা বললাম, তাতে আশ্চর্য হযো না, ‘তোমাদের নতুন জন্ম হওযা অবশ্যই দরকার৷’ 8 বাতাস য়েদিকে ইচ্ছা সেদিকে বয় আর তুমি তার শব্দ শুনতে পাও; কিন্তু কোথা থেকে আসে আর কোথায় বা তা বয়ে যায় তুমি তা জানো না৷ আত্মা থেকে যাদের জন্ম হয় তাদের সকলের বেলাও সেইরকম হয়৷ 9 এর উত্তরে নীকদীম তাঁকে বললেন, ‘এটা কেমন করে হতে পারে?’ 10 তখন যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি ইস্রায়েলীয়দের একজন গুরুত্বপূর্ণ গুরু; আর তুমি এটা জানো না? 11 যা সত্য আমি তোমাকে তাই বলছি, আমরা যা জানি তাই বলি, আমরা যা দেখেছি সেই বিষয়েই সাক্ষ্য দিই: কিন্তু আমরা যাই বলি না কেন তোমরা তা গ্রহণ করো না৷ 12 আমি তোমাদের কাছে পার্থিব বিষয়ের কথা বললে তোমরা যদি বিশ্বাস না করো, তবে আমি স্বর্গীয় বিষয়ে কোন কথা বললে তোমরা তা কেমন করে বিশ্বাস করবে? 13 যিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন সেই মানবপুত্র ছাড়া কেউ কখনও স্বর্গে ওঠেনি৷ 14 ‘মরুভূমির মধ্যে মোশি য়েমন সাপকে উঁচুতে তুলেছিলেন, তেমনি মানবপুত্রকে অবশ্যই উঁচুতে ওঠানো হবে৷ 15 সুতরাং য়ে কেউ মানবপুত্রকে বিশ্বাস করে সেই অনন্ত জীবন পায়৷’ 16 কারণ ঈশ্বর এই জগতকে এতোই ভালবাসেন য়ে তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে দিলেন, য়েন সেই পুত্রের ওপর য়ে কেউ বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় বরং অনন্ত জীবন লাভ করে৷ 17 ঈশ্বর জগতকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য তাঁর পুত্রকে এ জগতে পাঠান নি, বরং জগত য়েন তাঁর মধ্য দিয়ে মুক্তি পায় এইজন্য ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠিয়েছেন৷ 18 য়ে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে তার বিচার হয় না৷ কিন্তু য়ে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করেনা, সে দোষী সাব্যস্ত হয়, কারণ সে ঈশ্বরের একমাত্র পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে নি৷ 19 আর এটাই বিচারের ভিত্তি৷ জগতে আলো এসেছে, কিন্তু মানুষ আলোর চেয়ে অন্ধকারকে বেশী ভালবেসেছে, কারণ তারা মন্দ কাজ করেছে৷ 20 য়ে কেউ মন্দ কাজ করে সে আলোকে ঘৃণা করে, আর সে আলোর কাছে আসে না, পাছে তার কাজের স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পড়ে৷ 21 কিন্তু য়ে কেউ সত্যের অনুসারী হয় সে আলোর কাছে আসে, যাতে সেই আলোতে স্পষ্ট বোঝা যায় য়ে তার সমস্ত কাজ ঈশ্বরের মাধ্যমে হয়েছে৷ 22 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে যিহূদিযা প্রদেশে এলেন৷ তিনি সেখানে তাঁদের সঙ্গে থাকতে লাগলেন ও বাপ্তাইজ করতে লাগলেন৷ 23 য়োহনও শালীমের নিকট ঐনোন নামক স্থানে বাপ্তাইজ করছিলেন, কারণ সেখানে প্রচুর জল ছিল; আর লোকেরা তাঁর কাছে এসে বাপ্তিস্ম নিচ্ছিল৷ 24 য়োহন তখনও কারাগারে বন্দী হন নি৷ 25 সেই সময় ইহুদী রীতি অনুসারে শুচি হওযার বিষয়ে য়োহনের শিষ্যদের সঙ্গে একজন ইহুদীর তর্ক বাধে৷ 26 পরে তারা য়োহনের কাছে এসে বলল, ‘রব্বি (গুরু), তাঁকে মনে পড়ে যিনি যর্দন নদীর ওপারে আপনার সঙ্গে ছিলেন এবং য়াঁর বিষয়ে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন? তিনি লোকেদের বাপ্তাইজ করছেন আর সবাই তাঁর কাছে যাচ্ছে৷’ 27 এর উত্তরে য়োহন বললেন, ‘স্বর্গ থেকে দেওযা না হলে কেউই কোন কিছু লাভ করতে পারে না৷ 28 তোমরা নিজেরাই শুনেছ য়ে আমি বলেছিলাম, ‘আমি খ্রীষ্ট নই; কিন্তু আমাকে তাঁর আগেই পাঠানো হয়েছে৷’ 29 কনে বরেরই জন্য, কিন্তু বরের বন্ধু পাশে দাঁড়িয়ে থাকে বরের কথা শোনার জন্য৷ আর সে যখন বরের গলা শুনতে পায় তখন খুবই আনন্দিত হয়৷ তাই আজ আমার সেই আনন্দ পূর্ণ হল৷ 30 তিনি উত্তরোত্তর বড় হবেন, আর আমি অবশ্যই নগন্য হয়ে যাব৷ 31 ‘একজন যিনি উর্দ্ধ থেকে আসেন তিনি সবার উর্দ্ধে৷ য়ে এই জগতের মধ্য থেকে আসে সে জগতের, তাই সে যা কিছু বলে তা জগতের বিষয়েই বলে৷ যিনি স্বর্গ থেকে আসেন তিনি সবার উপরে৷ 32 তিনি যা দেখেছেন আর শুনেছেন তারই সাক্ষ্য দেন; কিন্তু কেউই তাঁর সাক্ষ্য মেনে নিতে রাজী নয়৷ 33 য়ে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করে সে তার দ্বারা প্রমাণ করে য়ে ঈশ্বরই সত্য, 34 কারণ ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি ঈশ্বরের কথাই বলেন৷ ঈশ্বর তাঁকে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ করেছেন৷ 35 পিতা তাঁর পুত্রকে ভালবাসেন, আর তিনি তাঁর হাতেই সব কিছু সঁপে দিয়েছেন৷ 36 য়ে কেউ পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবনের অধিকারী হয়; কিন্তু য়ে পুত্রকে অমান্য করে সে সেই জীবন কখনও লাভ করে না, বরং তার ওপরে ঈশ্বরের ক্রোধ থাকে৷’
1 ফরীশীরা জানতে পারল য়ে যীশু য়োহনের চেয়ে বেশী শিষ্য করেছেন ও বাপ্তাইজ করছেন৷ 2 যদিও যীশু নিজে বাপ্তাইজ করছিলেন না, বরং তাঁর শিষ্যরাই তা করছিলেন৷ 3 তারপর তিনি যিহূদিযা ছেড়ে চলে গেলেন এবং গালীলেই ফিরে গেলেন৷ 4 গালীলে যাবার সময় তাঁকে শমরিযার মধ্য দিয়ে য়েতে হল৷ 5 যাকোব তাঁর ছেলে য়োষেফকে য়ে ভূমি দিয়েছিলেন তারই কাছে শমরীযার শুখর নামে এক শহরে যীশু গেলেন৷ 6 এখানেই যাকোবের কুযাটি ছিল, যীশু সেই কুযার ধারে এসে বসলেন কারণ তিনি হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন, তখন বেলা প্রায় দুপুর৷ 7 একজন শমরীযা স্ত্রীলোক সেখানে জল তুলতে এল৷ যীশু তাকে বললেন, ‘আমায় একটু জল খেতে দাও তো৷’ 8 সেই সময় শিষ্যরা শহরে কিছু খাবার কিনতে গিয়েছিল৷ 9 সেই শমরীয় স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, ‘একি আপনি একজন ইহুদী হয়ে আমার কাছ থেকে খাবার জন্য জল চাইছেন! আমি একজন শমরীয় স্ত্রীলোক!’ ইহুদীরা শমরীয়দের সঙ্গে কোনরকম মেলামেশা করত না৷ 10 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি যদি জানতে য়ে ঈশ্বরের দান কি আর কে তোমার কাছ থেকে খাবার জন্য জল চাইছেন৷ তাহলে তুমিই আমার কাছে জল চাইতে আর আমি তোমাকে জীবন্ত জল দিতাম৷’ 11 স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, ‘মহাশয়, আপনি কোথা থেকে সেই জীবন্ত জল পাবেন? এই কুযাটি যথেষ্ট গভীর৷ জল তোলার কোন পাত্রও আপনার কাছে নেই৷ 12 আপনি কি আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোবের চেয়ে মহান? তিনি আমাদের এই কুযাটি দিয়ে গেছেন৷ তিনি নিজেই এই কুযার জল খেতেন এবং তাঁর সন্তানেরা ও তাঁর পশুপালও এর থেকেই জল পান করত৷’ 13 যীশু তাকে বললেন, ‘য়ে কেউ এই জল পান করবে তার আবার তেষ্টা পাবে৷ 14 কিন্তু আমি য়ে জল দিই তা য়ে পান করবে তার আর কখনও পিপাসা পাবে না৷ সেই জল তার অন্তরে এক প্রস্রবনে পরিণত হয়ে বইতে থাকবে, যা সেই ব্যক্তিকে অনন্ত জীবন দেবে৷’ 15 স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, ‘মশায়, আমাকে সেই জল দিন, য়েন আমার আর কখনও পিপাসা না পায় আর জল তুলতে আমায় এখানে আসতে না হয়৷’ 16 তিনি তাকে বললেন, ‘যাও, তোমার স্বামীকে এখানে ডেকে নিয়ে এস৷’ 17 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বলল, ‘আমার স্বামী নেই৷’যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি ঠিকই বলেছ য়ে তোমার স্বামী নেই৷ 18 তোমার পাঁচ জন স্বামী হয়ে গেছে; আর এখন য়ে লোকের সঙ্গে তুমি আছ সে তোমার স্বামী নয়, তাই তুমি যা বললে তা সত্যি৷’ 19 সেই স্ত্রীলোকটি তখন তাঁকে বলল, ‘মহাশয়, আমি দেখতে পাচ্ছি য়ে আপনি একজন ভাববাদী৷ 20 আমাদের পিতৃপুরুষেরা এই পর্বতের ওপর উপাসনা করতেন৷ কিন্তু আপনারা ইহুদীরা বলেন য়ে জেরুশালেমই সেই জায়গা য়েখানে লোকেদের উপাসনা করতে হবে৷’ 21 যীশু তাকে বললেন, ‘হে নারী, আমার কথায় বিশ্বাস কর! সময় আসছে যখন তোমরা পিতা ঈশ্বরের উপাসনা এই পাহাড়ে করবে না, জেরুশালেমেও নয়৷ 22 তোমরা শমরীয়রা কি উপাসনা কর তোমরা তা জানো না৷ আমরা ইহুদীরা কি উপাসনা করি আমরা তা জানি, কারণ ইহুদীদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ আসছে৷ 23 সময় আসছে, বলতে কি তা এসে গেছে, যখন প্রকৃত উপাসনাকারীরা আত্মায় ও সত্যে পিতা ঈশ্বরের উপাসনা করবে৷ পিতা ঈশ্বরও এইরকম উপাসনাকারীদেরই চান৷ 24 ঈশ্বর আত্মা, যাঁরা তাঁর উপাসনা করে তাদেরকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করতে হবে৷’ 25 তখন সেই স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, ‘আমি জানি, মশীহ আসছেন৷ মশীহকে তারা খ্রীষ্ট বলে৷ যখন তিনি আসবেন, তখন আমাদের সব কিছু জানাবেন৷’ 26 যীশু তাকে বললেন, ‘তোমার সঙ্গে য়ে কথা বলছে আমিই সেই মশীহ৷’ 27 সেই সময় তাঁর শিষ্যরা ফিরে এলেন৷ একজন স্ত্রীলোকের সঙ্গে যীশুকে কথা বলতে দেখে তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ তবু কেউ তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন না, ‘আপনি কি চাইছেন?’ বা ‘আপনি কি জন্য ওর সঙ্গে কথা বলছেন?’ 28 সেই স্ত্রীলোকটি তখন তার কলসী ফেলে রেখে গ্রামে গেল, আর লোকদের বলল, 29 ‘তোমরা এস, একজন লোককে দেখ, আমি যা কিছু করেছি, তিনি আমাকে সে সব বলে দিলেন৷ তিনিই কি সেই মশীহ নন?’ 30 তখন লোকেরা শহর থেকে বের হয়ে যীশুর কাছে আসতে লাগল৷ 31 এরই মাঝে তার শিষ্যরা তাঁকে অনুরোধ করে বললেন, ‘রব্বি (গুরু), আপনি কিছু খেয়ে নিন!’ 32 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমার কাছে এমন খাবার আছে যার কথা তোমরা কিছুই জান না৷’ 33 তখন তাঁর শিষ্যরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘তাহলে কি কেউ তাঁকে কিছু খাবার এনে দিয়েছে?’ 34 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁর ইচ্ছা পালন করা ও তাঁর য়ে কাজ তিনি আমায় করতে দিয়েছেন তা সম্পন্ন করাই হল আমার খাবার৷ 35 তোমরা প্রায়ই বলে থাক, ‘আর চার মাস বাকী আছে, তারপরই ফসল কাটার সময় হবে৷’ কিন্তু তোমরা চোখ মেলে একবার ক্ষেতের দিকে তাকিয়ে দেখ, ফসল কাটবার মতো সময় হয়েছে৷ 36 য়ে ফসল কাটছে সে এখনই তার মজুরী পাচ্ছে, আর সে তা করছে অনন্ত জীবন লাভের জন্য৷ তার ফলে বীজ য়ে বোনে আর ফসল য়ে কাটে উভয়েই একই সঙ্গে আনন্দিত হয়৷ 37 এই প্রবাদ বাক্যটি সত্য য়ে, ‘একজন বীজ বোনে আর অন্যজন কাটে৷’ 38 আমি তোমাদের এমন ফসল কাটতে পাঠিয়েছি, যার জন্য তোমরা কোন পরিশ্রম করনি৷ তার জন্য অন্যরা খেটেছে আর তোমরা তাদের কাজের ফসল তুলছ৷’ 39 সেই শহরের অনেক শমরীয় তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, কারণ সেই স্ত্রীলোকটি সাক্ষ্য দিচ্ছিল, ‘আমি যা যা করেছি সবই তিনি আমাকে বলে দিয়েছেন৷’ 40 শমরীয়রা তাঁর কাছে এসে যীশুকে তাদের সঙ্গে থাকতে অনুরোধ করল৷ তখন তিনি দুদিন সেখানে থাকলেন৷ 41 আরও অনেক লোক তাঁর কথা শুনে তাঁর ওপর বিশ্বাস করল৷ 42 তারা সেই স্ত্রীলোকটিকে বলল, ‘প্রথমে তোমার কথা শুনে আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু এখন আমরা নিজেরা তাঁর কথা শুনে বিশ্বাস করেছি ও বুঝতে পেরেছি য়ে ইনি সত্যিই জগতের উদ্ধারকর্তা৷’ 43 দুদিন পর তিনি সেখান থেকে গালীলে চলে গেলেন৷ 44 কারণ যীশু নিজেই বলেছিলেন য়ে একজন ভাববাদী কখনও তাঁর নিজের দেশে সম্মান পান না৷ 45 তাই তিনি যখন গালীলে এলেন, গালীলের লোকেরা তাঁকে সাদরে গ্রহণ করল৷ জেরুশালেমে নিস্তারপর্বের সময় তিনি যা যা করেছিলেন তা তারা দেখেছিল, কারণ তারাও সেই পর্বের সময় সেখানে গিয়েছিল৷ 46 পরে যীশু আবার গালীলের কান্না নগরে গেলেন৷ এখানেই তিনি জলকে দ্রাক্ষারসে পরিণত করেছিলেন৷ কফরনাহূম শহরে একজন রাজ-কর্মচারীর ছেলে খুবই অসুস্থ ছিল৷ 47 তিনি যখন শুনলেন য়ে যীশু যিহূদিযা থেকে গালীলে এসেছেন, তখন যীশুর কাছে গিয়ে তাঁকে মিনতি করে বললেন, তিনি য়েন কফরনাহূমে গিয়ে তার ছেলেকে সুস্থ করেন, কারণ তার ছেলে তখন মৃত্যুশয়্য়ায় ছিল৷ 48 যীশু তাকে বললেন, ‘তোমরা কেউই কোন অলৌকিক চিহ্ন ও বিস্ময়কর কাজের নিদর্শন না পেলে আমার উপর বিশ্বাস করবে না৷’ 49 সেই রাজ-কর্মচারী তাঁকে বললেন, ‘মহাশয়, আমার ছেলেটি মারা যাবার আগে অনুগ্রহ করে আসুন!’ 50 যীশু তাঁকে বললেন, ‘বাড়ি যাও, তোমার ছেলে বাঁচল৷’ যীশু তাঁকে য়ে কথা বললেন, সে কথা তিনি বিশ্বাস করে বাড়ি চলে গেলেন৷ 51 তিনি যখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন তখন পথে তাঁর চাকরেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করে বলল, ‘আপনার ছেলে ভাল হয়ে গেছে৷’ 52 তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে কখন ভাল হয়েছে?’তারা বলল, ‘গতকাল দুপুর একটার সময় তার জ্বর ছেড়েছে৷’ 53 ছেলেটির বাবা বুঝতে পারলেন য়ে ঠিক সেই সময়ই যীশু তাকে বলেছিলেন, ‘তোমার ছেলে বাঁচল৷’ তখন সেই রাজ-কর্মচারী ও তাঁর পরিবারের সকলে যীশুর ওপর বিশ্বাস করলেন৷ 54 যিহূদিযা থেকে গালীলে আসার পর যীশু এই দ্বিতীয় বার অলৌকিক কাজ করলেন৷
1 এরপর ইহুদীদের এক বিশেষ পর্বের সময় এলে যীশু জেরুশালেমে গেলেন৷ 2 জেরুশালেমে মেষ ফটকের কাছে একটা পুকুর ছিল৷ ইব্রীয়তে সেই পুকুরটিকে ‘বৈথেসদা’ বলত৷ এই পুকুরটির পাঁচটি চাঁদনী ঘাট ছিল; 3 ঘাটের সেইসব চাতালে অনেক অসুস্থ লোক শুয়ে থাকত; তাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্ধ, কেউ কেউ খোঁড়া এমনকি পঙ্গু রোগীও থাকত৷ 4 5 সেখানে একজন লোক ছিল য়ে আটত্রিশ বছর ধরে রোগে ভুগছিল৷ 6 যীশু তাকে সেখানে পড়ে থাকতে দেখলেন৷ তিনি জানতেন য়ে সে দীর্ঘদিন ধরে রোগে ভুগছে৷ তাই তাকে বললেন, ‘তুমি কি সুস্থ হতে চাও?’ 7 সেই অসুস্থ লোকটি বলল, ‘মহাশয় আমার এমন কোন লোক নেই, জল কেঁপে ওঠার সময় য়ে আমাকে পুকুরে নামিয়ে দেবে৷ আমি ওখানে পৌঁছানোর আগেই কেউ না কেউ আমার আগে পুকুরে নেমে পড়ে৷’ 8 যীশু তাকে বললেন, ‘ওঠ! তোমার বিছানা গুটিয়ে নাও, হেঁটে বেড়াও৷’ 9 লোকটি সঙ্গে সঙ্গে ভাল হয়ে গেল, আর তার বিছানা তুলে নিয়ে হাঁটতে থাকল৷এ ঘটনা বিশ্রামবারে ঘটল, 10 তাই য়ে লোকটি আরোগ্য লাভ করেছিল তাকে ইহুদীরা বলল, ‘আজ বিশ্রামবার, এভাবে তোমার বিছানা বয়ে বেড়ানো বিধি-ব্যবস্থা বিরুদ্ধ কাজ হচ্ছে৷’ 11 সে তখন তাদের বলল, ‘যিনি আমাকে সারিয়ে তুলেছেন তিনি বলেছিলেন, ‘তোমার বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াও৷” 12 তারা সেই লোকটিকে জিজ্ঞেস করল, ‘কে তোমাকে বলেছে য়ে তোমার বিছানা গুটিয়ে নিয়ে হেঁটে বেড়াও?’ 13 কিন্তু য়ে লোকটি আরোগ্যলাভ করেছিল সে জানত না, তিনি কে৷ কারণ সেই জায়গায় অনেক লোক ভীড় করেছিল এবং যীশু সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন৷ 14 পরে যীশু মন্দিরের মধ্যে সেই লোকটিকে দেখতে পেয়ে তাকে বললেন, ‘দেখ, তুমি এখন সুস্থ হয়ে গেছ; আর পাপ কোরো না, যাতে তোমার আরও খারাপ কিছু না হয়!’ 15 এরপর সেই লোকটি ইহুদীদের কাছে গিয়ে বলল য়ে, যীশুই তাকে আরোগ্য দান করেছেন৷ 16 আর এই কারণেই ইহুদীরা যীশুকে নির্য়াতন করতে শুরু করল; কারণ তিনি বিশ্রামবারে এইসব কাজ করছিলেন৷ 17 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘আমার পিতা সব সময় কাজ করে চলেছেন, তাই আমিও কাজ করি৷’ 18 তখন ইহুদীরা যীশুকে হত্যা করার জন্য আরো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠল৷ তারা বলল, ‘তিনি য়ে কেবল বিশ্রামবারে বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধ কাজ করছিলেন তাই নয়, তিনি ঈশ্বরকে তাঁর পিতা বলে সম্বোধন করেছিলেন৷ আর এইভাবে তিনি নিজেকে ঈশ্বরের সমান জাহির করছিলেন৷ 19 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; পুত্র নিজে থেকে কিছু করতে পারেন না৷ পিতাকে যা করতে দেখেন কেবল তাই করতে পারেন৷ পিতা যা কিছু করেন পুত্রও তাই করেন৷ 20 পিতা পুত্রকে ভালবাসেন, আর পিতা যা কিছু করেন তা পুত্রকে দেখান আর এর থেকে আরো মহান মহান কাজ পুত্রকে তিনি দেখাবেন, তখন তোমরা আশ্চর্য হয়ে যাবে৷ 21 পিতা মৃতদের জীবন দান করেন, তেমনি পুত্রও যাকে ইচ্ছা করেন তাকে জীবন দেন৷ 22 পিতা কারও বিচার করেন না, কিন্তু সমস্ত বিচারের ভার তিনি পুত্রকে দিয়েছেন৷ 23 যাতে পিতাকে য়েমন সমস্ত লোক সম্মান করে তেমনি পুত্রকেও সম্মান করে৷ য়ে পুত্রকে সম্মান করে না, সে পিতাকেও সম্মান করে না, কারণ পিতাই সেইজন যিনি পুত্রকে পাঠিয়েছেন৷ 24 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; য়ে কেউ আমার কথা শোনে, আর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন লাভ করে এবং সে অপরাধী বলে বিবেচিত হবে না৷ সে মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছে৷ 25 আমি তোমাদের সত্যি বলছি সময় আসছে; বলতে কি এসে গেছে, যখন মৃতেরা ঈশ্বরের পুত্রের রব শুনবে, আর যাঁরা শুনবে তারা বাঁচবে৷ 26 পিতার নিজের য়েমন জীবন দান করার ক্ষমতা রয়েছে ঠিক তেমনই তিনি তাঁর পুত্রকেও জীবন দান করার ক্ষমতা দিয়েছেন৷ 27 এবং পিতা সেই পুত্রের হাতেই সমস্ত বিচারের অধিকার দিয়েছেন, কারণ এই পুত্রই মানবপুত্র৷ 28 এই কথা শুনে তোমরা অবাক হযো না, কারণ সময় আসছে, যাঁরা কবরের মধ্যে আছে তারা সবাই মানবপুত্রের রব শুনবে৷ 29 তারপর তারা তাদের কবর থেকে বাইরে আসবে৷ যাঁরা সত্ কর্ম করেছে তারা উত্থিত হবে ও অনন্ত জীবন লাভ করবে৷ আর যাঁরা মন্দ কাজ করেছিল তারা পুনরুত্থিত হবে এবং দোষী বলে বিবেচিত হবে৷ 30 ‘আমি নিজের থেকে কিছুই করতে পারি না৷ আমি (ঈশ্বরের কাছ থেকে) য়েমন শুনি তেমনি বিচার করি; আর আমি যা বিচার করি তা ন্যায়, কারণ আমি আমার ইচ্ছামতো কাজ করি না, বরং যিনি (ঈশ্বর) আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁরই ইচ্ছাপূরণ করার চেষ্টা করি৷ 31 ‘আমি যদি আমার নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিই তবে আমার সেই সাক্ষ্য সত্য বলে গৃহীত হবে না৷ 32 অন্য একজন আছেন যিনি আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেন এবং আমি জানি য়ে সাক্ষ্যই তিনি দেন না কেন তা সত্য৷ 33 ‘তোমরা সকলেই য়োহনের কাছে লোক পাঠিয়েছ আর তিনি সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন৷ 34 কিন্তু আমি কোন মানুষের সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করি না৷ তবু আমি এসব কথা বলছি, যাতে তোমরা উদ্ধার পেতে পার৷ 35 য়োহন ছিলেন সেই প্রদীপের মতো যা জ্বলে এবং আলো দেয়; আর তোমরা কিছু সময়ের জন্য তার সেই আলো উপভোগ করে আনন্দিত হয়েছিল৷ 36 ‘কিন্তু য়োহনের সাক্ষ্য থেকে আরো বড় সাক্ষ্য আমার আছে; কারণ পিতা য়ে সব কাজ আমায় করতে দিয়েছেন, সে সব কাজ আমিই করছি, আর সেই সব কাজই প্রমাণ করছে য়ে পিতা আমায় পাঠিয়েছেন৷ 37 পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন এমনকি আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন, তোমরা কেউই কখনও তাঁর রব শোননি, তাঁর আকারও দেখনি৷ 38 আর তাঁর শিক্ষাও তোমাদের অন্তরে নেই, কারণ ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো না৷ 39 তোমরা সকলেই খুব মনোয়োগ সহকারে শাস্ত্রগুলি পড়, কারণ তোমরা মনে করো সেগুলির মধ্য দিয়েই তোমরা অনন্ত জীবন লাভ করবে আর সেই শাস্ত্রগুলিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে৷ 40 তবু তোমরা সেই জীবন লাভ করতে আমার কাছে আসতে চাও না৷ 41 ‘মানুষের প্রশংসা আমি গ্রহণ করি না৷ 42 আমি তোমাদের সকলকেই জানি আর এও জানি য়ে তোমরা ঈশ্বরকে ভালোবাসো না৷ 43 আমি আমার পিতার নামে এসেছি, তবু তোমরা আমায় গ্রহণ করো না; কিন্তু অন্য কেউ যদি তার নিজের নামে আসে তাকে তোমরা গ্রহণ করবে৷ 44 তোমরা কিভাবে বিশ্বাস করতে পারো? তোমরা তো একজন অন্য জনের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে চাও৷ আর য়ে প্রশংসা একমাত্র ঈশ্বরের কাছে থেকে আসে আর খোঁজ তোমরা করো না৷ 45 মনে করো না য়ে আমিই সেই ব্যক্তি য়ে পিতার কাছে তোমাদের ওপর দোষারোপ করব৷ তোমাদের সাহায্য করবেন বলে য়ে মোশির উপর তোমরা আশা রাখো তিনিই তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন৷ 46 তোমরা যদি মোশিকে বিশ্বাস করতে তবে আমাকেও বিশ্বাস করতে, কারণ মোশি তা আমার বিষয়েই লিখেছেন৷ 47 তোমরা যখন মোশির লেখায় বিশ্বাস করো না, তখন আমি যা বলি তা কেমন করে বিশ্বাস করবে?’
1 এরপর যীশু গালীল হ্রদের অপর পারে গেলেন, এই হ্রদকে তিবিরিযাও বলে৷ 2 বহু লোক তাঁর পেছনে পেছনে চলতে লাগল, কারণ রোগীদের সুস্থ করতে তিনি য়ে সব অলৌকিক চিহ্ন করতেন তা তারা দেখেছিল৷ 3 যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা পাহাড়ের উপরে গিয়ে সেখানে বসলেন৷ 4 সেই সময় ইহুদীদের নিস্তারপর্ব এগিয়ে আসছিল৷ 5 যীশু যখন দেখলেন বহু লোক তাঁর কাছে আসছে তখন তিনি ফিলিপকে বললেন, ‘এই লোকেদের খেতে দেবার জন্য আমরা কোথায় রুটি কিনতে পাব?’ 6 যীশু তাঁকে পরীক্ষা করবার জন্যই একথা বললেন, কারণ যীশু কি করবেন তা তিনি আগেই জানতেন৷ 7 ফিলিপ যীশুকে বললেন, ‘প্রত্যেকের হাতে এক টুকরো করে রুটি দিতে গেলে সারা মাসের রোজগারে রুটি কিনলেও তা যথেষ্ট হবে না৷’ 8 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে আর একজন, যার নাম আন্দরিয়, ইনি শিমোন পিতরের ভাই, তিনি যীশুকে বললেন, 9 ‘এখানে একটা ছোট ছেলে আছে, যার কাছে যবের পাঁচটা রুটি আর ছোট দুটো মাছ আছে, কিন্তু এত লোকের জন্য নিশ্চয়ই সেগুলি যথেষ্ট হবে না৷’ 10 যীশু বললেন, ‘লোকদের বসিয়ে দাও৷’ সেই জায়গায় অনেক ঘাস ছিল৷ তখন সব লোকেরা বসে গেল৷ সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার পুরুষ ছিল৷ 11 এরপর যীশু সেই রুটি কখানা নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন এবং যাঁরা সেখানে বসেছিল তাদের সেগুলি ভাগ করে দিলেন৷ আর তিনি মাছও ভাগ করে দিলেন৷ য়ে যত চাইল তত পেল৷ 12 তারা পরিতৃপ্ত হলে, যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘য়ে সব টুকরো টাকরা পড়ে আছে তা জড়ো কর, য়েন কোন কিছু নষ্ট না হয়৷ 13 তখন তাঁরা সে সব জড়ো করলেন, লোকেরা খাবার পরে যবের সেই পাঁচ খানা রুটির টুকরো-টাকরা যা পড়ে ছিল শিষ্যেরা তা জড়ো করলে বারো টুকরী ভর্তি হয়ে গেল৷ 14 লোকেরা যীশুকে এই অলৌকিক চিহ্ন করতে দেখে বলতে লাগল, ‘জগতে য়াঁর আগমনের কথা আছে ইনি নিশ্চয়ই সেই ভাববাদী৷’ 15 এতে যীশু বুঝলেন লোকেরা তাঁকে রাজা করবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তাই তিনি তাদের ছেড়ে একাই সেই পাহাড়ে উঠে গেলেন৷ 16 সন্ধ্যা হলে যীশুর শিষ্যরা হ্রদের ধারে নেমে গেলেন৷ 17 তাঁরা একটা নৌকায় উঠে হ্রদের অপর পারে কফরনাহূমের দিকে য়েতে থাকলেন৷ তখন অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল, আর যীশু তখনও তাদের কাছে আসেন নি৷ 18 আর খুব জোরে ঝোড়ো বাতাস বইছিল, ফলে ্ব্রদে বড় বড় ঢেউ উঠছিল৷ 19 এরই মধ্যে তিন চার মাইল নৌকা বেয়ে যাবার পর যীশুর শিষ্যরা দেখলেন, যীশু জলের ওপর দিয়ে হেঁটে আসছেন৷ তিনি যখন নৌকার কাছাকাছি এলেন, তখন শিষ্যরা খুব ভয় পেয়ে গেলেন৷ 20 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, ‘এই য়ে আমি; ভয় পেও না৷’ 21 তখন তাঁরা খুশী হয়ে যীশুকে নৌকাতে তুলে নিলেন৷ আর তাঁরা য়েখানে যাচ্ছিলেন নৌকা তখনই সেখানে পৌঁছে গেল৷ 22 হ্রদের অপর পারে য়ে জনতা ছিল, পরের দিন তারা বুঝতে পারল য়ে কেবলমাত্র একটা নৌকাই সেখানে ছিল আর যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে তাতে ওঠেন নি৷ তাঁর শিষ্যরা নিজেরাই চলে গিয়েছিলেন৷ 23 কিন্তু য়েখানে প্রভুকে ধন্যবাদ দেওযার পর লোকেরা রুটি খেয়েছিল, সেইখানে তখন তিবিরিযা থেকে কয়েকটা নৌকা এল৷ 24 কিন্তু যখন লোকেরা দেখল য়ে যীশু বা তাঁর শিষ্যরা কেউই সেখানে নেই, তখন তারা নৌকায় চড়ে যীশুর খোঁজে কফরনাহূমে চলে গেল৷ 25 তারা হ্রদের অপর পারে যীশুকে দেখতে পেয়ে বলল, ‘গুরু, আপনি এখানে কখন এসেছেন?’ 26 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা অলৌকিক চিহ্ন দেখেছ বলে য়ে আমার খোঁজ করছ তা নয়; কিন্তু তোমরা ়রুটি খেয়ে তৃপ্ত হয়েছিলে বলেই আমার খোঁজ করছ৷ 27 খাদ্যের মতো নশ্বর বস্তুর জন্য কাজ কোরো না; কিন্তু য়ে খাদ্য প্রকৃতই স্থাযী ও যা অনন্ত জীবন দান করে, তার জন্য কাজ কর; যা মানবপুত্র তোমাদের দেবেন৷ কারণ পিতা ঈশ্বর তোমাদের দেখিয়েছেন য়ে তিনি মানবপুত্রের সঙ্গেই আছেন৷’ 28 তারা তাঁকে বলল, ‘ঈশ্বরের কাজ করার জন্য আমাদের কি করতে হবে?’ 29 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তোমরা য়েন তাঁকে বিশ্বাস কর৷ এই হল ঈশ্বরের কাজ৷’ 30 তারা তাঁকে বলল, ‘আপনি কি এমন অলৌকিক কাজ করছেন, যা দেখে আমরা জানতে পারব য়ে আপনিই সেই ব্যক্তি যাঁকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন ও আপনার ওপর বিশ্বাস করব? 31 আমাদের পিতৃপুরুষেরা মরুপ্রান্তরে মান্না খেয়েছিল৷ য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘তিনি তাদের খাবার জন্য স্বর্গ থেকে রুটি দিলেন৷” 32 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; মোশি স্বর্গ থেকে সেই রুটি তোমাদের দেন নি, কিন্তু আমার পিতাই স্বর্গ থেকে সত্যিকারের রুটি তোমাদের দেন৷ 33 স্বর্গ থেকে নেমে এসে যিনি জগত সংসার জীবন দান করেন তিনিই ঈশ্বরের দেওযা ়রুটি৷’ 34 তারা তাঁকে বলল, ‘মহাশয়, সেই রুটি সব সময় আমাদের দিন৷’ 35 যীশু তাদের বললেন, ‘আমিই সেই রুটি যা জীবন দান করে৷ য়ে কেউ আমার কাছে আসে সে কখনও ক্ষুধার্ত হবে না, কখনও তার পিপাসা পাবে না৷ 36 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা আমায় দেখেছ অথচ আমায় বিশ্বাস কর না৷ 37 পিতা আমাকে যাদের দেন, তারা প্রত্যেকেই আমার কাছে আসবে৷ আর যাঁরা আমার কাছে আসে, আমি তাদের কখনই ফিরিয়ে দেব না৷ 38 কারণ আমি আমার খুশী মত কাজ করতে স্বর্গ থেকে নেমে আসি নি, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ করতে এসেছি৷ 39 যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা এই য়ে যাদের তিনি আমায় দিয়েছেন তাদের একজনকেও য়েন আমি না হারাই; বরং শেষ দিনে য়েন তাদের সকলকে আমি উত্থিত করি৷ 40 আমার পিতা এই চান, য়ে কেউ তাঁর পুত্রকে দেখে ও তাতে বিশ্বাস করে, সে য়েন অনন্ত জীবন লাভ করে; আর আমিই তাকে শেষ দিনে ওঠাব৷’ 41 তখন ইহুদীরা যীশুর সম্পর্কে গুঞ্জন শুরু করল, কারণ তিনি বলেছিলেন, ‘আমিই সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে৷’ 42 তারা বলল, ‘তিনি কি য়োষেফের ছেলে নন? আমরা কি এর বাবা মাকে চিনি না? তাহলে এখন কেমন করে তিনি বলছেন, ‘আমি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছি?’ 43 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘নিজেদের মধ্যে ওসব বচসা বন্ধ কর৷ 44 যিনি আমায় পাঠিয়েছেন সেই পিতা না আনলে কেউই আমার কাছে আসতে পারে না; আর আমিই তাকে শেষ দিনে জীবিত করে তুলব৷ 45 ভাববাদীদের পুস্তকে লেখা আছে: ‘তারা সকলেই ঈশ্বরের কাছে শিক্ষা লাভ করবে৷’য়ে কেউ পিতার কাছে শুনে শিক্ষা পেয়েছে সেই আমার কাছে আসে৷ 46 আমি বলছি না য়ে, কেউ পিতাকে দেখেছেন৷ কেবলমাত্র যিনি পিতার কাছ থেকে এসেছেন তিনিই পিতাকে দেখেছেন৷ 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, য়ে কেউ বিশ্বাস করেছে সেই অনন্ত জীবন পেয়েছে৷ 48 আমিই সেই রুটি যা জীবন দেয়৷ 49 তোমাদের পিতৃপুরুষেরা মরুপ্রান্তরে মান্না খেয়েছিল, কিন্তু তবু তারা মারা গিয়েছিল৷ 50 এ সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে আসে, আর কেউ যদি তা খায়, তবে সে মরবে না৷ 51 আমিই সেই জীবন্ত রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে৷ কেউ যদি এই রুটি খায় তবে সে চিরজীবি হবে৷ য়ে রুটি আমি দেব তা হল আমার দেহের মাংস৷ তা আমি দিই যাতে জগত জীবন পায়৷’ 52 এই কথা শুনে ইহুদীদের মধ্যে তর্ক বেধে গেল৷ তারা বলতে লাগল, ‘এই লোকটা কেমন করে তার দেহের মাংস আমাদের খেতে দিতে পারে?’ 53 যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি; তোমরা যদি মানবপুত্রের মাংস না খাও ও তাঁর রক্ত পান না কর, তাহলে তোমাদের মধ্যে জীবন নেই৷ 54 য়ে কেউ আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে অনন্ত জীবন পায়, আর শেষ দিনে আমি তাকে ওঠাবো৷ 55 আমার মাংসই প্রকৃত খাদ্য় ও আমার রক্তই প্রকৃত পানীয়৷ 56 য়ে আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে আমার মধ্যে থাকে, আর আমিও তার মধ্যে থাকি৷ 57 য়েমন জীবন্ত পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন, আর পিতার জন্য আমি জীবিত আছি, ঠিক সেরকম য়ে আমাকে খায় সে আমার দরুন জীবিত থাকবে৷ 58 এ সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছিল৷ এটা তেমন রুটি নয় যা তোমাদের পিতৃপুরুষেরা খেয়েছিল এবং তা সত্ত্বেও পরে তারা সকলে মারা গিয়েছিল৷ এই রুটি য়ে খায় সে চিরজীবি হবে৷’ 59 কফরনাহূমের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দেবার সময় যীশু এই সব কথা বললেন৷ 60 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে তাঁর এই কথা শুনে বলল, ‘এ বড়ই কঠিন কথা; কে এ গ্রহণ করতে পারে?’ 61 যীশু অন্তরে টের পেলেন য়ে তাঁর শিষ্যরা এই বিষয় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে৷ তাই তিনি তাদের বললেন, ‘এই শিক্ষায় কি তোমরা ধাক্কা পেয়েছ? 62 তবে মানবপুত্র আগে য়েখানে ছিলেন উর্দ্ধে সেখানে তাঁকে ফিরে য়েতে দেখলে তোমরা কি বলবে? 63 আত্মাই জীবন দান করে, রক্ত মাংসের শরীর কোন উপকারে আসে না৷ আমি তোমাদের সকলকে য়ে সব কথা বলেছি তা হল আধ্যাত্মিক আর তাই জীবন দান করে৷ 64 কিন্তু তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যাঁরা বিশ্বাস করে না৷’ কারণ যীশু শুরু থেকেই জানতেন কে কে তাঁকে বিশ্বাস করে না, আর কেই বা তাঁকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে৷ 65 তাই তিনি বললেন, ‘এজন্য আমি তোমাদের বলেছি, ‘পিতা ইচ্ছা না করলে কেউই আমার কাছে আসতে পারে না৷” 66 এই কারণেই তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে পিছিয়ে গেল, তাঁর সঙ্গে চলাফেরা বন্ধ করে দিল৷ 67 তখন যীশু সেই বারোজন প্রেরিতকে বললেন, ‘তোমরাও কি চলে য়েতে চাইছ?’ 68 শিমোন পিতর বললেন, ‘প্রভু, আমরা কার কাছে যাব? আপনার কাছে সেই বাণী আছে যা অনন্ত জীবন দান করে৷ 69 আমরা বিশ্বাস করি ও জানি য়ে আপনিই সেই পবিত্র একজন, যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন৷’ 70 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘আমি কি তোমাদের বারোজনকে মনোনীত করি নি? তবু তোমাদের মধ্যে একজন দিযাবল আছে৷’ 71 তিনি শিমোন ঈষ্করিযোতের ছেলে যিহূদার বিষয়ে বলছিলেন, কারণ যিহূদা সেই বারো জনের মধ্যে একজন হলেও পরে যীশুকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে৷
1 এরপর যীশু গালীলের চারদিকে ভ্রমণ করছিলেন৷ তিনি যিহূদিযায় ভ্রমণ করতে চাইলেন না, কারণ ইহুদীরা তাঁকে খুন করবার সুয়োগ খুঁজছিল৷ 2 এই সময় ইহুদীদের কুটিরবাস পর্বএগিয়ে আসছিল৷ 3 তখন তাঁর ভাইরা তাঁকে বলল, ‘তুমি এই জায়গা ছেড়ে যিহূদিযাতে ঐ উত্সবে যাও; যাতে তুমি য়ে সব অলৌকিক কাজ করছ তা তোমার শিষ্যরাও দেখতে পায়৷ 4 কারণ কেউ যদি প্রকাশ্যে নিজেকে তুলে ধরতে চায় তবে সে নিশ্চয়ই তার কাজ গোপন করবে না৷ তুমি যখন এত সব মহত্ কাজ করছ তখন নিজেকে জগতের কাছে প্রকাশ কর৷ য়েন সবাই তা দেখতে পায়৷’ 5 তাঁর ভাইরাও তাঁর ওপর বিশ্বাস করত না৷ 6 যীশু তাঁর ভাইদের বললেন, ‘আমার নিরূপিত সময় এখনও আসে নি; কিন্তু তোমাদের যাওযার জন্য য়ে কোন সময় সঠিক; এখনই তোমরা য়েতে পার৷ 7 জগত সংসার তোমাদের ঘৃণা করতে পারে না, কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে৷ কারণ পৃথিবীর লোকেরা, যাঁরা মন্দ কাজ করে, সেই সব লোকেদের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষ্য দিই৷ 8 তোমরা পর্বে যাও, আমি এখন এই উত্সবে যাচ্ছি না, কারণ আমার নিরূপিত সময় এখনও আসে নি৷’ 9 এই কথা বলার পর তিনি গালীলেই রয়ে গেলেন৷ 10 তাঁর ভাইরা উত্সবে চলে গেল, পরে তিনিও সেখানে গেলেন; কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে সেই পর্বে না গিয়ে গোপনে সেখানে গেলেন৷ 11 ইহুদী নেতারা উত্সবে এসে তাঁর খোঁজ করতে লাগল৷ তারা বলাবলি করতে লাগল, ‘সেই লোকটা গেল কোথায়?’ 12 আর জনতার মধ্যে তাঁকে নিয়ে নানা রকম গুজব ছড়াতে লাগল৷ কেউ কেউ বলল, ‘আরে তিনি খুব ভালো লোক৷’ কিন্তু আবার অন্যরা বলল, ‘না, না, ও লোকদের ঠকাচ্ছে৷’ 13 কিন্তু ইহুদী নেতাদের ভয়ে তাঁর বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে চাইল না৷ 14 পর্বের আধা-আধি সময়ে যীশু মন্দিরে গিয়ে লোকদের মাঝে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ 15 ইহুদীরা এতে খুব আশ্চর্য হয়ে বলল, ‘এই লোক কোন কিছু অধ্যয়ন না করেই কি ভাবে এত সব জ্ঞান লাভ করল?’ 16 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যা শিক্ষা দিই তা আমার নিজস্ব নয়৷ যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এসব সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওযা৷ 17 যদি কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে চায় তাহলে সে জানবে আমি যা শিক্ষা দিই তা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে, না আমি নিজের থেকে এসব কথা বলছি৷ 18 যদি কেউ নিজের ভাবনার কথা নিজে বলে, তাহলে সে নিজেই নিজেকে সম্মানিত করতে চায়; কিন্তু য়ে তার প্রেরণ কর্তার গৌরব চায়, সেই লোক সত্যবাদী, তার মধ্যে কোন অসাধুতা নেই৷ 19 মোশি কি তোমাদের কাছে বিধি-ব্যবস্থা দেন নি? কিন্তু তোমরা কেউই সেই বিধি-ব্যবস্থা পালন কর না৷ তোমরা কেন আমাকে হত্যা করতে চাইছ?’ 20 জনতা উত্তর দিল, ‘তোমাকে ভূতে পেয়েছে, কে তোমাকে হত্যা করতে চাইছে?’ 21 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি একটা অলৌকিক কাজ করেছি, আর তোমরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেছ৷ 22 মোশিও তোমাদের সুন্নতের বিধি-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন৷ যদিও মুলতঃ সেই বিধি-ব্যবস্থা মোশির নয় কিন্তু এই বিধি-ব্যবস্থা প্রাচীন পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে এসেছে৷ আর তোমরা এমনকি বিশ্রামবারেও শিশুদের সুন্নত করে থাকো৷ 23 মোশির বিধি-ব্যবস্থা য়েন লঙঘন করা না হয়, এই যুক্তিতে বিশ্রামবারেও যদি কোন মানুষের সুন্নত করা চলে, তাহলে আমি বিশ্রামবারে একটা মানুষকে সম্পূর্ণ সুস্থ করেছি বলে তোমরা আমার ওপর এত ক্রুদ্ধ হয়েছ কেন? 24 বাহ্যিকভাবে কোন কিছু দেখেই তার বিচার করো না৷ যা সঠিক সেই হিসাবেই ন্যায় বিচার কর৷’ 25 তখন জেরুশালেমের লোকেদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘এই লোককেই না ইহুদী নেতারা হত্যা করতে চাইছে? 26 কিন্তু দেখ! এ তো প্রকাশ্যেই শিক্ষা দিচ্ছে; কিন্তু তারা তো এঁকে কিছুই বলছে না৷ এটা কি হতে পারে য়ে নেতারা সত্যিই জানে য়ে, ইনি সেই খ্রীষ্ট? 27 আমরা জানি ইনি কোথা থেকে এসেছেন; কিন্তু মশীহ যখন আসবেন তখন কেউ জানবে না তিনি কোথা থেকে এসেছেন৷’ 28 তখন যীশু মন্দিরে শিক্ষা দিতে দিতে বেশ চেঁচিয়ে বললেন, ‘তোমরা আমায় জান, আর আমি কোথা থেকে এসেছি তাও তোমরা জান৷ তবু বলছি, আমি নিজের থেকে আসি নি, তবে যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনি সত্য; আর তোমরা তাঁকে জান না৷ 29 কিন্তু আমি তাঁকে জানি, কারণ তিনি আমায় পাঠিয়েছেন৷ আমি তাঁরই কাছ থেকে এসেছি৷’ 30 তখন তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য চেষ্টা করতে লাগল৷ তবু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিতে সাহস করল না, কারণ তখনও তাঁর সময় আসে নি৷ 31 কিন্তু সেই জনতার মধ্যে থেকে অনেকেই তাঁর ওপর বিশ্বাস করল; আর বলল, ‘মশীহ এসে কি তাঁর চেয়েও বেশী অলৌকিক চিহ্ন করবেন?’ 32 ফরীশীরা শুনল য়ে সাধারণ লোক যীশুর বিষয়ে চুপি চুপি এই সব আলোচনা করছে৷ তখন প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা যীশুকে ধরে আনবার জন্য মন্দিরের কয়েকজন পদাতিককে পাঠাল৷ 33 তখন যীশু বললেন, ‘আমি আর অল্প কিছুকাল তোমাদের সঙ্গে আছি; তারপর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর কাছে ফিরে যাব৷ 34 তোমরা আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমার খোঁজ পাবে না, কারণ আমি য়েখানে থাকব তোমরা সেখানে আসতে পারো না৷’ 35 ইহুদী নেতারা তখন পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘সে এখন কোথায় যাবে য়ে আমরা ওকে খুঁজলেও পাব না? গ্রীকদের শহরে য়ে সব ইহুদীরা বসবাস করছে, ও কি তাদের কাছে যাবে আর সেখানে গিয়ে গ্রীকদেব কাছে শিক্ষা দেবে? নিশ্চয়ই নয়৷ 36 ও য়ে কথা বলল তার মানে কি য়ে, ‘তোমরা আমার খোঁজ করবে কিন্তু আমায় পাবে না৷’ আর ‘আমি য়েখানে যাব, তোমরা সেখানে আসতে পার না?’ 37 পর্বের শেষ দিন, য়ে দিনটি বিশেষ দিন, সেই দিন যীশু উঠে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বললেন, ‘কারোর যদি পিপাসা পেয়ে থাকে তবে সে আমার কাছে এসে পান করুক৷ 38 শাস্ত্রে এ কথা বলে, য়ে আমার ওপর বিশ্বাস করে তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের নদী বইবে৷’ 39 যীশু পবিত্র আত্মা সম্পর্কে এই কথা বললেন, ‘সেই পবিত্র আত্মা তখনও দেওযা হয় নি, কারণ যীশু তখনও মহিমান্বিত হন নি; কিন্তু পরে যাঁরা যীশুকে বিশ্বাস করে তারা সেই আত্মা পাবে৷’ 40 সমবেত জনতা যখন এই কথা শুনল তখন তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘ইনি সত্যিই সেই ভাববাদী৷’ 41 অন্যরা বলল, ‘ইনি মশীহ (খ্রীষ্ট)৷’এ সত্ত্বেও কেউ কেউ বলল, ‘খ্রীষ্ট গালীলী থেকে আসবেন না৷ 42 শাস্ত্রে কি একথা লেখা নেই য়ে খ্রীষ্টকে দাযূদের বংশধর হতে হবে; আর দাযূদ য়ে বৈত্লেহম শহরে থাকতেন, তিনি সেখান থেকে আসবেন?’ 43 তাঁর জন্য এইভাবে লোকদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হল৷ 44 কেউ কেউ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চাইল; কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিতে সাহস করল না৷ 45 তখন মন্দিরের সেই পদাতিকরা, প্রধান যাজক ও ফরীশীদের কাছে ফিরে গেল৷ তাঁরা মন্দিরের সেই পদাতিককে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা তাঁকে ধরে আনলে না কেন?’ 46 পদাতিকরা বলল, ‘উনি য়ে সব কথা বলছিলেন কোন মানুষ কখনও সেই ধরণের কথা বলেনি!’ 47 তখন ফরীশীরা বললেন, ‘তাহলে তোমরাও কি ঠকে গেলে? 48 ফরীশী বা নেতাদের মধ্যে এমন কেউ কি ছিলেন যিনি তাঁর ওপর বিশ্বাস করেছেন? 49 কিন্তু এইসব লোকেরা বিধি-ব্যবস্থার কিছুই জানে না৷ তারা অভিশপ্ত এবং ঈশ্বরের কৃপা থেকে বঞ্চিত৷’ 50 তখন এই নেতাদের একজন, নীকদীম তাঁদের বললেন, এই নীকদীম ফরীশীদেরই মধ্যে একজন, ইনি আগে একবার যীশুর কাছে গিয়েছিলেন৷ 51 ‘কোন ব্যক্তির কথা না শুনে আমরা আমাদের বিধি-ব্যবস্থায় তার বিচার করতে পারি না৷ সে কি করেছে তা না জেনে আমরা তার বিচার করতে পারি না৷’ 52 এর উত্তরে তারা তাকে বলল, ‘তুমি নিশ্চয়ই গালীলী থেকে আসো নি৷ তাই না? শাস্ত্র পড়ে দেখো তাহলে জানবে য়ে গালীলী থেকে কোন ভাববাদীর আবির্ভাব হয় নি৷’ 53 এরপর ইহুদী নেতারা সেখান থেকে য়ে যার বাড়ি চলে গেলেন৷
1 এরপর যীশু সেখান থেকে জৈতুন পর্বতমালায় চলে গেলেন৷ 2 খুব ভোরে তিনি আবার মন্দিরে ফিরে গেলে লোকেরা আবার তাঁর কাছে এসে জড়ো হল, তখন তিনি সেখানে বসে তাদের কাছে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন৷ 3 সেই সময় ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা, ব্যভিচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছে এমন একজন স্ত্রীলোককে তাঁর কাছে নিয়ে এল৷ তারা সেই স্ত্রীলোককে তাদের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে যীশুকে বলল, 4 ‘গুরু, এই স্ত্রীলোকটি ব্যভিচার করার সময় হাতে নাতেই ধরা পড়েছে৷ 5 বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে মোশি আমাদের বলছেন, এই ধরণের স্ত্রীলোককে য়েন আমরা পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলি৷ এখন আপনি এবিষয়ে কি বলবেন?’ 6 তাঁকে পরীক্ষা করার ছলেই তারা একথা বলছিল, যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তারা খুঁজে পায়৷ কিন্তু যীশু হেঁট হয়ে মাটিতে আঙ্গুল দিয়ে লিখতে লাগলেন৷ 7 ইহুদী নেতারা যখন বার বার তাঁকে জিজ্ঞেস করতে লাগল, তখন তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে য়ে নিস্পাপ সেই প্রথম একে পাথর মারুক৷’ 8 এরপর তিনি আবার হেঁট হয়ে আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন৷ 9 তারা ঐ কথা শোনার পর বুড়ো লোক থেকে শুরু করে সকলে এক এক করে সেখান থেকে চলে গেল৷ কেবল যীশু সেখানে একা থাকলেন আর সেই স্ত্রীলোকটি মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিল৷ 10 তখন যীশু মাথা তুলে সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, ‘হে নারী, তারা সব কোথায়? কেউ কি তোমায় দোষী সাব্যস্ত করল না?’ 11 স্ত্রীলোকটি উত্তর দিল, ‘কেউ করে নি, মহাশয়৷’ তখন যীশু বললেন, ‘আমিও তোমায় দোষী করছি না, যাও এখন থেকে আর পাপ কোরো না৷’ 12 এরপর যীশু আবার লোকদের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন এবং বললেন, ‘আমিই জগতের আলো৷ য়ে কেউ আমার অনুসারী হয় সে কখনও অন্ধকারে থাকবে না; কিন্তু সেই আলো পাবে যা জীবন দেয়৷’ 13 তখন ফরীশীরা তাঁকে বলল, ‘তুমি নিজেই নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছ৷ তোমার সাক্ষ্য গ্রাহ্য হবে না৷’ 14 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যদি নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিই, তবু আমার সাক্ষ্য সত্য, কারণ আমি জানি আমি কোথা থেকে এসেছি, আর কোথায় বা যাচ্ছি; কিন্তু আমি কোথা থেকে এসেছি বা কোথায় যাচ্ছি তা তোমরা জানো না৷ 15 মানুষের বিচারবোধের মাপকাঠিতে তোমরা আমার বিচার করছ৷ আমি কারো বিচার করি না৷ 16 কিন্তু আমি যদি বিচার করি, তবে আমার বিচার সত্য, কারণ আমি একা নই৷ পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি আমার সঙ্গেই আছেন৷ 17 তোমাদের নিয়মে লেখা আছে, যখন দুই ব্যক্তি একই সাক্ষ্য দেয় তখন তা সত্যি৷ 18 আমি নিজেই নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিই৷ আর পিতা, যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনিও আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন৷’ 19 তখন তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার পিতা কোথায়?’যীশু বললেন, ‘তোমরা না জানো আমাকে, না জানো আমার পিতাকে৷ তোমরা যদি আমাকে জানতে, তবে আমার পিতাকেও জানতে৷’ 20 মন্দিরের দানের বাক্সের কাছে দাঁড়িয়ে শিক্ষা দেবার সময় যীশু এইসব কথা বললেন৷ কিন্তু কেউ তাঁকে গ্রেপ্তার করল না, কারণ তখনও তাঁর নিরূপিত সময় আসে নি৷ 21 তিনি তাদের আর একবার বললেন, ‘আমি যাচ্ছি, আর তোমরা আমার খোঁজ করবে; কিন্তু তোমরা তোমাদের পাপেই মরবে৷ আমি য়েখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে আসতে পারবে না৷’ 22 তখন ইহুদীরা বলছিল, ‘তিনি কি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন? কেন তিনি বললেন, ‘আমি য়েখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে আসতে পারবে না?” 23 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা এই নিম্নলোকের আর আমি উর্দ্ধলোকের৷ তোমরা এজগতের, আমি এ জগতের নই৷ 24 তাই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের পাপেই মরবে৷ তোমরা যদি বিশ্বাস না কর য়ে আমিই তিনি, তবে তোমরা তোমাদের পাপের জন্যই মরবে৷’ 25 তখন তারা জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি কে?’যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যা, তা তো শুরু থেকেই তোমাদের বলে আসছি৷ 26 তোমাদের বিষয়ে বলার ও বিচার করার অনেক কিছুই আমার আছে৷ যা হোক যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনি সত্য৷ আর আমি তাঁর কাছ থেকে যা কিছু শুনি, পৃথিবীর মানুষের কাছে তাই বলি৷’ 27 তারা বুঝতে পারে নি য়ে, তিনি তাদের কাছে পিতার বিষয়ে বলছেন৷ 28 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘যখন তোমরা মানবপুত্রকে উঁচুতে তুলবে, তখন জানবে য়ে আমিই তিনি এবং আমি নিজের থেকে কিছুই করি না৷ পিতা য়েমন আমায় শিখিয়েছেন, আমি সেরকমই বলছি৷ 29 আর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তিনি আমার সঙ্গে আছেন৷ তিনি আমাকে একা ফেলে রাখেন নি, কারণ আমি সব সময় সন্তোষজনক কাজই করি৷’ 30 যীশু যখন এইসব কথা বললেন তখন অনেকেরই তাঁর ওপর বিশ্বাস হল৷ 31 ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, তাদের উদ্দেশ্যে যীশু বললেন, ‘তোমরা যদি সকলে আমার শিক্ষা মান্য করে চল তবে তোমরা সকলেই আমার প্রকৃত শিষ্য৷ 32 তোমরা সত্যকে জানবে, আর সেই সত্য তোমাদের স্বাধীন করবে৷’ 33 তারা তাঁকে বলল, ‘আমরা অব্রাহামের বংশধর৷ আর আমরা কখনও কারোর দাসে পরিণত হই নি৷ আপনি কিভাবে বলছেন য়ে আমাদের স্বাধীন করা হবে?’ 34 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি-য়ে ক্রমাগত পাপ করে চলে, সে পাপের দাস৷ 35 কোন দাস পরিবারের স্থাযী সদস্য হয়ে থাকতে পারে না; কিন্তু পুত্র পরিবারে চিরকাল থাকে৷ 36 তাই পুত্র যদি তোমাদের স্বাধীন করে, তবে তোমরা প্রকৃতই স্বাধীন হবে৷ 37 আমি জানি তোমরা অব্রাহামের বংশধর; কিন্তু তোমরা আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছ, কারণ তোমরা আমার শিক্ষাগ্রহণ করো না৷ 38 আমি আমার পিতার কাছে যা দেখেছি সেই বিষয়েই বলে থাকি, আর তোমরা তোমাদের পিতার কাছ থেকে যা যা শুনেছ তাই তো করে থাক৷’ 39 এর জবাবে তারা তাঁকে বলল, ‘আমাদের পিতা অব্রাহাম৷’যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা যদি অব্রাহামের সন্তান হতে, তাহলে অব্রাহাম যা করেছেন তোমরাও তাই করতে; 40 কিন্তু এখন তোমরা আমায় হত্যা করতে চাইছ৷ আমি সেই লোক য়ে ঈশ্বরের কাছ থেকে সত্য শুনেছি এবং তোমাদের তা বলেছি৷ অব্রাহাম তো এরকম কাজ করেন নি৷ 41 তোমাদের পিতা য়ে কাজ করে, তোমরা তাই করো৷’তখন তারা তাঁকে বলল, ‘আমরা জারজ সন্তান নই৷ ঈশ্বর হচ্ছেন আমাদের একমাত্র পিতা৷’ 42 যীশু তাদের বললেন, ‘ঈশ্বর যদি তোমাদের পিতা হতেন, তাহলে তোমরা আমায় ভালবাসতে, কারণ আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছি আর এখন তোমাদের মাঝে এখানে আছি৷ আমি নিজে থেকে আসিনি, ঈশ্বর আমায় পাঠিয়েছেন৷ 43 আমি যা বলি, তোমরা তা বুঝতে পারো না? কারণ তোমরা আমার কথা গ্রহণ করো না৷ 44 দিযাবল তোমাদের পিতা এবং তোমরা তার পুত্র৷ তোমরা তোমাদের পিতার ইচ্ছাই পূর্ণ করতে চাও৷ দিযাবল শুরু থেকেই খুনী; আর সত্যের পক্ষে সে কখনও দাঁড়ায় নি, কারণ তার মধ্যে তো সত্যের লেশমাত্র নেই৷ সে যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই তার মধ্য থেকে তা বের হয়, কারণ সে মিথ্যাবাদী ও মিথ্যার পিতা৷ 45 আমি সত্য বলি বলে তোমরা আমায় বিশ্বাস করো না৷ 46 তোমাদের মধ্যে কে আমাকে পাপী বলে দোষী করতে পারে? আমি যখন সত্য বলছি তখন তোমরা কেন বিশ্বাস করছ না? 47 য়ে ঈশ্বরের লোক, সে ঈশ্বরের কথা শোনে৷ আর এই কারণেই তোমরা শুনতে চাও না, কারণ তোমরা ঈশ্বরের নও৷’ 48 এর উত্তরে ইহুদীরা বলল, ‘আমরা কি ঠিক বলিনি য়ে তুমি একজন শমরীয়, আর তোমার মধ্যে এক ভূত রয়েছে?’ 49 যীশু জবাব দিলেন, ‘দেখ, আমায় ভূতে গ্রাস করে নি, বরং আমি আমার পিতাকে সম্মান করি৷ কিন্তু তোমরা আমার অসম্মান করেছ৷ 50 আমি নিজের জন্য সম্মান চাইছি না৷ একজন আছেন যিনি আমার জন্য সম্মান চান, তিনিই বিচার করেন৷ 51 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি আমার শিক্ষা অনুসারে চলে, সে কখনও মরবে না৷’ 52 ইহুদীরা তাঁকে বলল, ‘এখন আমরা বুঝেছি য়ে তোমায় ভূতে গ্রাস করেছে৷ অব্রাহাম ও ভাববাদীরা মারা গেছে আর তুমি বলছ, ‘যদি কেউ আমার শিক্ষা অনুসারে চলে, তবে সে মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না৷’ 53 তুমি কি মনে কর য়ে তুমি আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহামের চেয়ে মহান? অব্রাহাম মারা গেছেন, আর ভাববাদীরাও মারা গেছেন৷ তুমি নিজেকে কি মনে করছ?’ 54 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘আমি যদি নিজেকে সম্মানিত করি তবে সেই সম্মানের কোন মূল্য নেই৷ যিনি আমায় সম্মানিত করেন তিনি আমাদের পিতা, য়াঁর সম্পর্কে তোমরা বল, তিনি আমাদের ঈশ্বর৷’ 55 আর তোমরা তাঁকে জানো না, কিন্তু আমি তাঁকে জানি৷ আমি যদি বলি য়ে আমি তাঁকে জানি না, তাহলে আমি তোমাদেরই মতো মিথ্যাবাদী হয়ে যাবো৷ কিন্তু আমি তাঁকে অবশ্যই জানি, আর তিনি যা কিছু বলেন আমি সে সকল পালন করি৷ 56 তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম আমার আগমনের দিন দেখতে পাবেন বলে খুশী হয়েছিলেন৷ তিনি সেই দিন দেখে খুশী হয়েছিলেন৷’ 57 তখন ইহুদীরা তাঁকে বলল, ‘তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বছর হয়নি আর তুমি বলছ য়ে তুমি অব্রাহামকে দেখেছ!’ 58 যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি৷ অব্রাহামের জন্মের আগে থেকেই আমি আছি৷’ 59 তখন তারা তাঁকে পাথর ছুঁড়ে মারবার জন্য পাথর তুলে নিল; কিন্তু যীশু নিজেকে লুকিয়ে ফেললেন ও মন্দির চত্বর ছেড়ে চলে গেলেন৷
1 যীশু পথে হাঁটছিলেন, সেই সময় তিনি একজন লোককে দেখতে পেলেন য়ে জন্ম থেকেই অন্ধ৷ 2 যীশুর অনুগামীরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘গুরু, কার পাপে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে? এর পাপে অথবা এর বাবা-মার পাপে?’ 3 যীশু বললেন, ‘এই লোকটির বা এর বাবা-মার পাপের জন্য য়ে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে তা নয়, বরং এই ব্যক্তি অন্ধ হয়ে জন্মেছে যাতে আমি যখন তাকে সুস্থ করি, তখন লোকে ঈশ্বরের শক্তির প্রকাশ দেখতে পায়৷ 4 যতক্ষণ দিন আছে ততক্ষণ যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর কাজ আমাদের করে য়েতে হবে৷ যখন রাত আসবে তখন আর কেউ কাজ করতে পারবে না৷ 5 আমি যতক্ষণ এই জগতে আছি, আমিই এই জগতের আলো৷’ 6 এই কথা বলার পর তিনি মাটিতে থুতু ফেললেন৷ আর মুখের সেই লালা দিয়ে মণ্ড তৈরী করে, তা অন্ধ লোকটির চোখে লাগিয়ে দিলেন৷ 7 এরপর যীশু সেই অন্ধ লোকটিকে বললেন, ‘শীলোহ সরোবরে গিয়ে ধুয়ে ফেল৷ (‘শীলোহ’ অনুবাদ করলে এই নামের অর্থ ‘প্রেরিত’৷)’ তখন সে গিয়ে ধুয়ে ফেলল আর দৃষ্টিশক্তি লাভ করে ফিরে এল৷ 8 তখন সেই লোকটির প্রতিবেশীরা ও যাঁরা তাকে ভিক্ষা করতে দেখত তারা বলল, ‘এ কি সেই লোক নয় য়ে বসে বসে ভিক্ষা করত?’ 9 কেউ কেউ বলল, ‘হ্যাঁ, সেই তো৷’ আবার অন্যরা বলল, ‘না, এই লোকটা তারই মতো দেখতে৷’ কিন্তু সে বলল, ‘আমি সেই একই লোক৷’ 10 তখন তারা তাকে বলল, ‘তুমি কি করে দৃষ্টিশক্তি লাভ করলে?’ 11 সে এর উত্তরে বলল, ‘যীশু নামের লোকটি মণ্ড তৈরী করে, আমার চোখে তা লাগিয়ে দিলেন, আর বললেন, ‘শীলোহ সরোবরে যাও ও তোমার চোখ ধুয়ে ফেল৷’ তখন আমি গেলাম ও ধুয়ে ফেললাম আর তখনই দৃষ্টিশক্তি লাভ করলাম৷” 12 তারা তাকে বলল, ‘সেই যীশু কোথায়?’সে বলল, ‘আমি জানি না৷’ 13 য়ে লোকটি আগে অন্ধ ছিল তাকে তারা ফরীশীদের কাছে নিয়ে গেল৷ 14 য়ে দিন যীশু মণ্ড তৈরী করে ঐ লোকটির চোখে লাগিয়ে তাকে দৃষ্টিশক্তি দান করেন, সে দিনটি ছিল বিশ্রামবার৷ 15 তাই ফরীশীরা আবার তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি কিভাবে তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলে?’লোকটি উত্তর দিল, ‘তিনি মণ্ড তৈরী করে আমার চোখে লাগিয়ে দিলেন, আমি চোখ ধুয়ে ফেলবার পর দেখতে পেলাম৷’ 16 ফরীশীদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘এই লোক ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি, কারণ এ বিশ্রামবারের নিয়ম মানে না৷’আবার অন্যরা বলল, ‘একজন পাপী কিভাবে এই সব অলৌকিক কাজ করতে পারে?’ তাই এই নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিল৷ 17 এরপর ইহুদী নেতারা অন্ধ লোকটিকে আবার জিজ্ঞেস করল, ‘য়ে লোকটি তোমার দৃষ্টিশক্তি দিয়েছে, তার বিষয়ে তুমি কি বল?’লোকটি বলল, ‘তিনি একজন ভাববাদী৷’ 18 লোকটির বাবা-মাকে না ডাকা পর্যন্ত ইহুদীরা বিশ্বাস করতে চাইল না য়ে, সে অন্ধ ছিল আর এখন দৃষ্টিশক্তি লাভ করেছে৷ 19 তারা তার বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করল, ‘এই কি তোমাদের সেই ছেলে যার বিষয়ে তোমরা বলে থাক য়ে, সে অন্ধ হয়ে জন্মেছে? তাহলে এ কিভাবে এখন দেখতে পাচ্ছে?’ 20 এর উত্তরে তার বাবা-মা বলল, ‘আমরা জানি এ আমাদের ছেলে, আর এ অন্ধই জন্মেছিল৷ 21 কিন্তু এখন কিভাবে দেখতে পাচ্ছে আমরা জানি না, আর এও জানি না য়ে কে একে দৃষ্টিশক্তি দিয়েছেন৷ একেই জিজ্ঞেস করুন! এর যথেষ্ট বয়স হয়েছে, নিজের বিষয় নিজে ভালোই বলতে পারবে৷’ 22 ইহুদী নেতাদের ভয়ে, তার বাবা-মা এই কথা বলল৷ কারণ ইহুদী নেতারা আগেই স্থির করেছিল য়ে কেউ যদি যীশুকে মশীহ বলে স্বীকার করে, তবে সে প্রার্থনা সভা থেকে বিতাড়িত হবে৷ 23 এ জন্যই তার বাবা-মা বলেছিল, ‘এর যথেষ্ট বয়স হয়েছে, আপনারা একেই জিজ্ঞেস করুন৷’ 24 তাই য়ে অন্ধ ছিল, ইহুদী নেতারা তাকে দ্বিতীয় বার ডেকে বলল, ‘ঈশ্বরকে মহিমা প্রদান কর৷ সত্য বল আমরা জানি ঐ লোকটা পাপী৷’ 25 তখন য়ে অন্ধ ছিল সে বলল, ‘তিনি পাপী কি না তা আমি জানি না৷ আমি কেবল একটা বিষয় জানি, য়ে আমি অন্ধ ছিলাম, কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি৷’ 26 তখন ইহুদী নেতারা তাকে বলল, ‘সে তোমাকে কি করেছিল? সে কিভাবে তোমাকে দৃষ্টিশক্তি দিল?’ 27 সে তাদের বলল, ‘আমি আগেই তোমাদের বলেছি, কিন্তু তোমরা আমার কথা শোন নি৷ তবে আবার কেন শুনতে চাইছ? তোমরাও কি তাঁর শিষ্য হতে চাও?’ 28 তখন তারা তাকে তাচ্ছিল্য় করে বলল, ‘তুই তার শিষ্য, কিন্তু আমরা মোশির শিষ্য৷ 29 আমরা জানি ঈশ্বর মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন, কিন্তু এই লোকটা কোথা থেকে এসেছে তা আমরা জানি না৷’ 30 এর জবাবে লোকটি তাদের বলল, ‘কি আশ্চর্যের বিষয় য়ে, তিনি কোথা থেকে এসেছেন তা আপনারা জানেন না অথচ তিনি আমায় দৃষ্টিশক্তি দান করলেন৷ 31 আমরা জানি য়ে ঈশ্বর পাপীদের কথা শোনেন না৷ কিন্তু ঈশ্বর তাঁর কথা শোনেন, য়ে ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং ঈশ্বর যা চান তাই করে৷ 32 একজন জন্মান্ধকে কেউ য়ে দৃষ্টিশক্তি দান করেছে, একথা কেউ কোন দিন শোনে নি৷ 33 ঐ মানুষটি যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে না আসতেন তবে তিনি কিছুই করতে পারতেন না৷’ 34 এর উত্তরে তারা তাকে বলল, ‘তুই তো পাপেই জন্মেছিস! আর তুই কিনা আমাদের শিক্ষা দিতে চাইছিস?’ তারপর তারা তাকে তাড়িয়ে দিল৷ 35 যীশু শুনতে পেলেন য়ে ইহুদী নেতারা তাকে সমাজ-গৃহ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে৷ তখন যীশু তার দেখা পেয়ে তাকে বললেন, ‘তুমি কি মানবপুত্রের ওপর বিশ্বাস কর?’ 36 সে উত্তর দিল, ‘মহাশয়, তিনি কে? আমায় বলুন, আমি য়েন তাঁকে বিশ্বাস করতে পারি৷’ 37 যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি তাঁকে দেখেছ আর তিনিই এখন তোমার সঙ্গে কথা বলছেন৷’ 38 তখন সে বলল, ‘প্রভু, আমি বিশ্বাস করছি৷’ এবং সে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে উপাসনা করল৷ 39 যীশু বললেন, ‘বিচার করতে আমি এ জগতে এসেছি৷ আমি এসেছি যাতে যাঁরা দেখতে পায় না তারা দেখতে পায়, আর যাঁরা দেখতে পায় তারা য়েন অন্ধে পরিণত হয়৷’ 40 ফরীশীদের মধ্যে কয়েকজন যাঁরা যীশুর সঙ্গে ছিল, তারা একথা শুনে তাঁকে বলল, ‘নিশ্চয়ই আপনি বলতে চান নি য়ে আমরাও অন্ধ?’ 41 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা যদি অন্ধ হতে তাহলে তোমাদের কোন পাপই হত না৷ কিন্তু তোমরা এখন বলছ আমরা দেখতে পাচ্ছি, তাই তোমাদের পাপ রয়ে গেছে৷’
1 যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; যদি কেউ সদর দরজা দিয়ে মেষ খোঁযাড়ে না ঢোকে এবং তার পরিবর্তে অন্য কোন ভাবে টপকে ঢোকে, তবে সে একজন চোর বা ডাকাত; 2 কিন্তু য়ে ব্যক্তি দরজা দিয়ে ঢোকে সে মেষপালক৷ 3 দারোযান তাকে দরজা খুলে দেয়, আর মেষরা তার কন্ঠস্বর শোনে৷ সে তার নিজের মেষগুলিকে নাম ধরে ডাকে আর তাদের বাইরে নিয়ে যায়৷ 4 সে যখন তার নিজের সব মেষদের বের করে নেয়, তখন সে তাদের আগে আগে চলে, আর মেষরা তার পেছনে পেছনে চলতে থাকে, কারণ তারা তার কন্ঠস্বর চেনে৷ 5 কিন্তু মেষরা যাকে জানে না এমন লোকের পেছনে যাবে না, বরং তারা তার থেকে দূরে পালিয়ে যাবে, কারণ তারা অচেনা লোকের কন্ঠস্বর চেনে না৷’ 6 যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি বললেন; কিন্তু তিনি য়ে কি বলতে চাইছেন তা তারা বুঝতে পারল না৷ 7 তখন যীশু আবার তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; আমি মেষদের জন্য খোঁযাড়ের দরজা স্বরূপ৷ 8 যাঁরা আমার আগে এসেছে তারা সব চোর ডাকাত, কিন্তু মেষরা তাদের ডাক শোনে নি৷ 9 আমিই দরজা৷ যদি কেউ আমার মধ্য দিয়ে ঢোকে তবে সে রক্ষা পাবে৷ সে ভেতরে আসবে এবং বাইরে গেলে তার চারণভূমি পাবে৷ 10 চোর কেবল চুরি, খুন ও ধ্বংস করতে আসে৷ আমি এসেছি, যাতে লোকেরা জীবন লাভ করে, আর য়েন তা পরিপূর্ণ ভাবেই লাভ করে৷’ 11 ‘আমিই উত্তম মেষপালক৷ উত্তম পালক মেষদের জন্য তার জীবন সমর্পণ করে৷ 12 কোন বেতনভূক কর্মচারী প্রকৃত মেষপালক নয়৷ মেষরা তার নিজের নয়, তাই সে যখন নেকড়ে বাঘ আসতে দেখে তখন মেষদের ফেলে রেখে পালায়৷ আর নেকড়ে বাঘ তাদের আক্রমণ করে এবং তারা ছড়িয়ে পড়ে৷ 13 বেতনভূক কর্মচারী পালায়, কারণ বেতনের বিনিময়ে সে কাজ করে, মেষদের জন্য তার কোন চিন্তাই নেই৷ 14 ‘আমিই উত্তম পালক৷ আমি আমার মেষদের জানি আর আমার মেষরা আমায় জানে৷ ঠিক য়েমন আমার পিতা আমাকে জানেন, আমিও আমার পিতাকে জানি; আর আমি মেষদের জন্য আমার জীবন সঁপে দিই৷ 15 16 আমার এমন আরো অনেক মেষ আছে যাঁরা এই খোঁযাড়ের নয়৷ আমি অবশ্যই তাদেরও আনব, তারাও আমার কথা শুনবে আর তারা তখন সকলে এক পাল হবে আর তাদের পালকও হবেন একজন৷ 17 এই কারণেই পিতা আমায় ভালবাসেন, কারণ আমি আমার প্রাণ দান করি য়েন আবার তা পেতে পারি৷ 18 কেউ আমার কাছ থেকে তা হরণ করে নিতে পারবে না, বরং আমি তা স্ব-ইচ্ছাতেই করছি৷ এটা দান করার অধিকার আমার আছে এবং আবার তা ফিরে পাওযার অধিকারও আমার আছে৷ আমার পিতার কাছ থেকেই আমি এই সব শুনেছি৷’ 19 এইসব কথার কারণে জনগণের মধ্যে এ নিয়ে মতবিরোধ হল৷ 20 তাদের মধ্যে অনেকে বলল, ‘ওকে ভূতে পেয়েছে, ও পাগল৷ ওর কথা কেন শুনছ?’ 21 আবার অন্যরা বলল, ‘যাদের ভূতে পায় তারা তো এমন কথা বলে না৷ ভূত নিশ্চয়ই অন্ধকে দৃষ্টিশক্তি দান করতে পারে না, পারে কি?’ 22 এরপর জেরুশালেমে প্রতিষ্ঠার পর্বএল, তখন ছিল শীতকাল৷ 23 যীশু মন্দির চত্বরে শলোমনের বারান্দাতে পায়চারি করছিলেন৷ 24 কিছু ইহুদী তাঁর চারপাশে জড়ো হয়ে তাঁকে বলল, ‘তুমি আর কতকাল আমাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবে? তুমি যদি মশীহ হও তাহলে আমাদের স্পষ্ট করে বল৷’ 25 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের ইতিমধ্যেই বলেছি, আর তোমরা তা বিশ্বাস করছ না৷ আমি আমার পিতার নামে য়ে সব অলৌকিক কাজ করি সেগুলিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে৷ 26 কিন্তু তোমরা বিশ্বাস করো না, কারণ তোমরা আমার পালের মেষ নও৷ 27 আমার মেষরা আমার কন্ঠস্বর শোনে৷ আমি তাদের জানি, আর তারা আমার অনুসরণ করে৷ 28 আমি তাদের অনন্ত জীবন দিই, আর তারা কখনও বিনষ্ট হয় না, আমার হাত থেকে কেউ তাদের কেড়ে নিতেও পারবে না৷ 29 আমার পিতা, যিনি তাদেরকে আমায় দিয়েছেন, তিনি সবার ও সবকিছু থেকে মহান, আর কেউ পিতার হাত থেকে কিছুই কেড়ে নিতে পারবে না৷ 30 আমি ও পিতা, আমরা এক৷’ 31 ইহুদীরা তাঁকে মারবার জন্য আবার পাথর তুলল৷ 32 যীশু তাদের বললেন, ‘পিতার শক্তিতে আমি অনেক ভাল কাজ করেছি, তার মধ্যে কোন্ কাজটার জন্য তোমরা পাথর মারতে চাইছ?’ 33 ইহুদীরা এর উত্তরে তাঁকে বলল, ‘তুমি য়ে সব ভাল কাজ করেছ, তার জন্য আমরা তোমায় পাথর মারতে চাইছি না৷ কিন্তু আমরা তোমাকে পাথর মারতে চাইছি এই জন্য য়ে, তুমি ঈশ্বর নিন্দা করেছ৷ তুমি একজন মানুষ, অথচ নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবী করছ৷’ 34 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমাদের বিধি-ব্যবস্থায় কি একথা লেখা নেই য়ে, ‘আমি বলেছি তোমরা ঈশ্বর৷’ 35 শাস্ত্রে তাদেরই ঈশ্বর বলেছিল যাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী এসেছিল; আর শাস্ত্র সব সময়ই সত্য৷ 36 আমিই সেই ব্যক্তি, পিতা যাঁকে মনোনীত করে জগতে পাঠালেন৷ আমি বলেছি য়ে, ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র৷’ তবে তোমরা কেন বলছ য়ে আমি ঈশ্বর নিন্দা করছি? 37 আমি যদি আমার পিতার কাজ না করি, তাহলে আমায় বিশ্বাস করো না৷ 38 কিন্তু আমি যখন সেইসব কাজ করছি তখনও যদি তোমরা আমাকে বিশ্বাস না করো, তাহলে সেই সব কাজকে বিশ্বাস কর৷ তাহলে তোমরা জানতে পারবে ও বুঝতে পারবে য়ে পিতা আমাতে আছেন আর আমি পিতার মধ্যে আছি৷’ 39 এরপর তারা আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা করল, কিন্তু তিনি তাদের হাত এড়িয়ে চলে গেলেন৷ 40 যর্দনের অপর পারে য়েখানে য়োহন বাপ্তাইজ করছিলেন, যীশু সেখানে আবার গেলেন ও সেখানে থাকলেন৷ 41 বহুলোক তাঁর কাছে আসতে থাকল, আর তারা বলাবলি করতে লাগল, ‘য়োহন কোন অলৌকিক কাজ করেন নি বটে; কিন্তু এই মানুষটির বিষয়ে য়োহন যা বলেছেন, সে সবই সত্য৷’ 42 আর সেখানে অনেকেই যীশুর ওপর বিশ্বাস করল৷
1 লাসার নামে একটি লোক অসুস্থ ছিলেন; তিনি বৈথনিযা গ্রামে থাকতেন৷ সেই গ্রামেই মরিয়ম ও তাঁর বোন মার্থাও থাকতেন৷ 2 এই মরিয়মই বহুমূল্য সুগন্ধি আতর যীশুর উপরে ঢেলে নিজের চুল দিয়ে তাঁর পা মুছিয়ে দিয়েছিলেন৷ লাসার ছিলেন এই মরিয়মেরই ভাই৷ 3 তাই লাসারের বোনেরা একটি লোক পাঠিয়ে যীশুকে বলে পাঠালেন, ‘প্রভু, আপনার প্রিয় বন্ধু লাসার অসুস্থ৷’ 4 যীশু একথা শুনে বললেন, ‘এই রোগে তার মৃত্যু হবে না; কিন্তু তা ঈশ্বরের মহিমার জন্যই হয়েছে, য়েন ঈশ্বরের পুত্র মহিমান্বিত হন৷’ 5 যীশু মার্থা, তার বোনও লাসারকে ভালবাসতেন৷ 6 তাই তিনি যখন শুনলেন য়ে লাসার অসুস্থ, তখন য়েখানে ছিলেন সেই জায়গায় আরো দুদিন রয়ে গেলেন৷ 7 এরপর তিনি শিষ্যদের বললেন, ‘চল, আমরা আবার যিহূদিযাতে যাই৷’ 8 তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘গুরু, সম্প্রতি সেখানকার লোকেরা আপনাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে চাইছিল৷ তবে কেন আপনি আবার সেখানে য়েতে চাইছেন?’ 9 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘দিনে বারো ঘন্টা আলো থাকে৷ কেউ যদি দিনের আলোতে চলে তবে সে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় না, কারণ সে জগতের আলো দেখতে পায়৷ 10 কিন্তু কেউ যদি রাতের আঁধারে চলে তবে সে হোঁচট খায়, কারণ তার সামনে কোন আলো নেই৷’ 11 তিনি একথা বলার পর তাদের আবার বললেন, ‘আমাদের বন্ধু লাসার ঘুমিয়ে পড়েছে; কিন্তু আমি তাকে জাগাতে যাচ্ছি৷ 12 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, সে যদি ঘুমিয়ে থাকে তবে সে ভাল হয়ে যাবে৷’ 13 যীশু লাসারের মৃত্যুর বিষয়ে বলছিলেন, কিন্তু তাঁরা মনে করলেন তিনি তাঁর স্বাভাবিক ঘুমের কথা বলছেন৷ 14 তাই যীশু তখন তাদের স্পষ্ট করে বললেন, ‘লাসার মারা গেছে৷ 15 আর তোমাদের কথা ভেবে আমি আনন্দিত য়ে আমি সেখানে ছিলাম না, কারণ এখন তোমরা আমাকে বিশ্বাস করবে৷ চল, এখন আমরা তার কাছে যাই৷’ 16 তখন থোমা (যাঁকে দিদুমঃ বলে) অন্য শিষ্যদের উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘চল, আমরাও যাবো, আমরাও যীশুর সঙ্গে মরব৷’ 17 যীশু বৈথনিযাতে এসে জানতে পারলেন য়ে গত চারদিন ধরে লাসার কবরে আছেন৷ 18 বৈথনিযা থেকে জেরুশালেমের দূরত্ব ছিল প্রায় দুই মাইল৷ 19 তাই ইহুদীদের অনেকেই মার্থা ও মরিয়মকে তাঁদের ভাইয়ের মৃত্যুর পর সান্ত্বনা দিতে এসেছিল৷ 20 মার্থা যখন শুনলেন য়ে যীশু এসেছেন, তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, কিন্তু মরিয়ম ঘরেই থাকলেন৷ 21 মার্থা যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন তাহলে আমার ভাই মরত না৷ 22 কিন্তু এখনও আমি জানি য়ে, আপনি ঈশ্বরের কাছে যা কিছু চাইবেন, ঈশ্বর আপনাকে তাই দেবেন৷’ 23 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তোমার ভাই আবার উঠবে৷’ 24 মার্থা তাঁকে বললেন, ‘আমি জানি শেষ দিনে পুনরুত্থানের সময় সে আবার উঠবে৷’ 25 যীশু মার্থাকে বললেন, ‘আমিই পুনরুত্থান, আমিই জীবন৷ য়ে কেউ আমাকে বিশ্বাস করে, সে মরবার পর জীবন ফিরে পাবে৷ 26 য়ে কেউ জীবিত আছে ও আমায় বিশ্বাস করে, সে কখনও মরবে না৷ তুমি কি একথা বিশ্বাস কর?’ 27 মার্থা তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, প্রভু! আমি বিশ্বাস করি য়ে জগতে যাঁর আসার কথা আছে আপনিই সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র৷’ 28 এই কথা বলার পর মার্থা সেখান থেকে চলে গেলেন ও তার বোন মরিয়মকে একান্তে ডেকে বললেন, ‘গুরু এসেছেন, আর তিনি তোমায় ডাকছেন৷’ 29 মরিয়ম একথা শুনে তাড়াতাড়ি করে যীশুর কাছে গেলেন৷ 30 যীশু তখনও গ্রামের মধ্যে ঢোকেন নি৷ মার্থা য়েখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তিনি সেখানেই ছিলেন৷ 31 য়ে ইহুদীরা মরিয়মের সঙ্গে বাড়িতে ছিল ও তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল, তারা যখন দেখল য়ে মরিয়ম তাড়াতাড়ি করে উঠে বাইরে যাচ্ছেন, তখন তারাও তার পিছনে পিছনে চলল, তারা মনে করল য়ে তিনি হয়তো লাসারের কবরের কাছে যাচ্ছেন ও সেখানে গিয়ে কাঁদবেন৷ 32 যীশু য়েখানে ছিলেন, মরিয়ম সেখানে এসে তাঁকে দেখে তাঁর পায়ের ওপর পড়ে বললেন, ‘প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন, আমার ভাই মরত না৷’ 33 যীশু যখন দেখলেন য়ে মরিয়ম কাঁদছেন আর তার সঙ্গে য়ে সব ইহুদীরা এসেছিল তারাও কাঁদছে, তখন তিনি দুঃখিত হয়ে উঠলেন এবং অন্তরে গভীরভাবে বিচলিত হলেন৷ 34 তখন তিনি বললেন, ‘তোমরা তাকে কোথায় রেখেছ?’ তারা বললেন, ‘প্রভু, আসুন, এসে দেখুন৷’ 35 যীশু কেঁদে ফেললেন৷ 36 তখন সেই ইহুদীরা সকলে বলতে লাগল, ‘দেখ! উনি লাসারকে কত ভালোবাসতেন৷’ 37 কিন্তু তাদের মধ্যে আবার কেউ কেউ বলল, ‘যীশু তো অন্ধকে দৃষ্টিশক্তি দিয়েছেন; কেন তিনি লাসারকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচালেন না?’ 38 এরপর যীশু আবার অন্তরে বিচলিত হয়ে উঠলেন৷ লাসারকে য়েখানে রাখা হয়েছিল, যীশু সেই কবরের কাছে গেলেন৷ কবরটি ছিল একটা গুহা, যার প্রবেশ পথ একটা পাথর দিয়ে ঢাকা ছিল৷ 39 যীশু বললেন, ‘ঐ পাথরটা সরিয়ে ফেল৷’সেই মৃত ব্যক্তির বোন মার্থা বললেন, ‘প্রভু চারদিন আগে লাসারের মৃত্যু হয়েছে৷ এখন পাথর সরালে এর মধ্য থেকে দুর্গন্ধ বের হবে৷’ 40 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি কি তোমায় বলিনি, যদি বিশ্বাস কর তবে ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পাবে?’ 41 এরপর তারা সেই পাথরখানা সরিয়ে দিল, আর যীশু উর্দ্ধ দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘পিতা, আমি তোমায় ধন্যবাদ দিই, কারণ তুমি আমার কথা শুনেছ৷ 42 আমি জানি তুমি সব সময়ই আমার কথা শুনে থাক৷ কিন্তু আমার চারপাশে যাঁরা দাঁড়িয়ে আছে তাদের জন্য আমি একথা বলছি, য়েন তারা বিশ্বাস করে য়ে তুমি আমায় পাঠিয়েছ৷’ 43 এই কথা বলার পর যীশু জোর গলায় ডাকলেন, ‘লাসার বেরিয়ে এস!’ 44 মৃত লাসার সেই কবর থেকে বাইরে এল৷ তার হাতপা টুকরো কাপড় দিয়ে তখনও বাঁধা ছিল আর তার মুখের ওপর একখানা কাপড় জড়ানো ছিল৷যীশু তখন তাদের বললেন, ‘বাঁধন খুলে দাও এবং ওকে য়েতে দাও৷’ 45 তখন মরিয়মের কাছে যাঁরা এসেছিল, সেই সব ইহুদীদের মধ্যে অনেকে যীশু যা করলেন তা দেখে যীশুর ওপর বিশ্বাস করল৷ 46 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন ফরীশীদের কাছে গিয়ে যীশু যা করেছিলেন তা তাদের জানালো৷ 47 এরপর প্রধান যাজক ও ফরীশীরা পরিষদের এক মহাসভা ডেকে সেখানে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘আমরা এখন কি করব? এই লোকটা তো অনেক অলৌকিক চিহ্নকার্য় করছে৷ 48 আমরা যদি ওকে এই ভাবেই চলতে দিই তাহলে তো সকলেই এর ওপর বিশ্বাস করবে৷ তখন রোমীয়েরা এসে আমাদের এই মন্দির ও আমাদের জাতিকে ধ্বংস করবে৷’ 49 কিন্তু তাদের মধ্যে একজন, য়াঁর নাম কাযাফা, যিনি সেই বছরের জন্য মহাযাজকের পদ পেয়েছিলেন, তাদের বললেন, ‘তোমরা কিছুই জানো না৷ 50 আর তোমরা এও বোঝ না য়ে গোটা জাতি ধ্বংস হওযার পরিবর্তে সেই মানুষের মৃত্যু হওযা তোমাদের পক্ষে মঙ্গলজনক হবে৷’ 51 একথা কাযাফা য়ে নিজের থেকে বললেন তা নয়, কিন্তু সেই বছরের জন্য মহাযাজক হওযাতে তিনি এই ভাববাণী করলেন, য়ে সমগ্র জাতির জন্য যীশু মৃত্যুবরণ করতে যাচ্ছেন৷ 52 যীশু য়ে কেবল ইহুদী জাতির জন্য মৃত্যুবরণ করবেন তা নয়, সারা জগতে য়ে সমস্ত ঈশ্বরের সন্তানরা চারদিকে ছড়িয়ে আছে, তাদের সকলকে একত্রিত করার জন্য যীশু মৃত্যুবরণ করবেন৷ 53 তাই সেই দিন থেকে তারা যীশুকে হত্যা করার জন্য চক্রান্ত করতে লাগল৷ 54 যীশু তখন প্রকাশ্যে ইহুদীদের মধ্যে চলাফেরা বন্ধ করে দিলেন৷ তিনি সেখান থেকে মরুপ্রান্তরের কাছে ইফ্রযিম নামে এক শহরে চলে গেলেন এবং সেখানে তিনি তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে থাকলেন৷ 55 ইহুদীদের নিস্তারপর্ব এগিয়ে আসছিল, আর অনেক লোক নিজেদের শুচি করবার জন্য নিস্তারপর্বের আগেই দেশ থেকে জেরুশালেমে গেল৷ 56 তারা সেখানে যীশুর খোঁজ করতে লাগল৷ তারা মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল,. ‘তোমরা কি মনে কর? তিনি কি এই পর্বে আসবেন?’ 57 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা এই আদেশ দিল য়ে, যীশু কোথায় আছেন তা যদি কেউ জানে তবে তাদের য়েন জানানো হয় যাতে তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারে৷
1 নিস্তারপর্বের ছদিন আগে যীশু বৈথনিযাতে গেলেন য়েখানে লাসার বাস করতেন৷ এই মৃত লাসারকে যীশু বাঁচিয়েছিলেন৷ 2 সেখানে তারা যীশুর জন্য এক ভোজের আযোজন করছিলেন৷ মার্থা খাবার পরিবেশন করছিলেন৷ যীশুর সঙ্গে যাঁরা খেতে বসেছিল তাদের মধ্যে লাসারও ছিলেন৷ 3 তখন মরিয়ম বিশুদ্ধ জটামাংসীথেকে তৈরী করা প্রায় আধ সের মতো দামী আতর নিয়ে এসে যীশুর পায়ে তা ঢেলে দিলেন, আর নিজের মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা দুখানি মুছিয়ে দিলেন তখন সমস্ত ঘর আতরের সুগন্ধে ভরে গেল৷ 4 যিহূদা ঈষ্করিযোত সেখানে ছিল, সে যীশুর শিষ্যদের মধ্যে একজন, য়ে তাঁকে পরে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে৷ মরিয়মের সেই কাজ যিহূদার ভাল লাগে নি৷ যিহূদা ঈষ্করিযোত বলল, 5 ‘এই আতর তিনশো রৌপ্য় মুদ্রায়বিক্রি করে সেই অর্থ কেন দরিদ্রদের দেওযা হোল না?’ 6 গরীবদের জন্য চিন্তা করতো বলে য়ে সে একথা বলেছিল তা নয়, সে ছিল চোর৷ তার কাছে টাকার থলি থাকত আর সে তার থেকে প্রায়ই টাকা চুরি করতো৷ 7 তখন যীশু বললেন, ‘ওকে থামিয়ে দিও না৷ আমাকে সমাধি দিনের জন্য প্রস্তুত করতে তাকে এই আতর রাখতে হয়েছে৷ 8 তোমাদের মধ্যে গরীবরা সব সময়ই থাকবে, কিন্তু তোমরা সবসময় আমাকে পাবে না৷’ 9 বহু ইহুদী জানতে পারল য়ে যীশু বৈথনিযাতে আছেন৷ তারা সেখানে য়ে কেবল যীশুর জন্য গেল তাই নয়, য়ে লাসারকে যীশু মৃত্যু থেকে জীবিত করে তুলেছেন তাকে দেখবার জন্যও তারা সেখানে গেল৷ 10 তাই প্রধান যাজকেরা লাসারকে হত্যা করার চক্রান্ত করতে লাগলেন৷ 11 কারণ তারই জন্য বহু ইহুদী তাদের ছেড়ে যীশুর ওপর বিশ্বাস করতে লাগল৷ 12 য়ে বিপুল জনতা নিস্তারপর্বের জন্য এসেছিল, পরের দিন তারা শুনল য়ে যীশু জেরুশালেমে আসছেন৷ 13 তখন তারা খেজুর পাতা নিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাতে বেরিয়ে পড়ল৷ তারা চিত্কার করে বলতে লাগল,‘তাঁর প্রশংসা কর, তাঁকে স্বাগত জানাও! যিনি প্রভুর নামে আসছেন, ঈশ্বর তাঁকে আশীর্বাদ করুন৷ ইস্রায়েলের রাজাকে ঈশ্বর আশীর্বাদ করুন!’গীতসংহিতা 118:25-26 14 যীশু একটা গাধাকে দেখতে পেয়ে তার ওপর বসলেন, য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে: 15 ‘সিযোন নগরী,ভয় পেও না! দেখ, তোমাদের রাজা আসছেন৷ দেখ, তোমাদের রাজা বাচ্চা গাধায় চড়ে আসছেন৷’সখরিয় 9:9 16 এসবের অর্থ তাঁর শিষ্যরা প্রথমে বুঝতে পারেন নি৷ কিন্তু যীশু যখন মহিমায় উত্তোলিত হলেন, তখন তাঁদের মনে পড়ল য়ে শাস্ত্রে এগুলিই তাঁর সম্পর্কে লেখা হয়েছে এবং লোকেরা এসব তাঁর জন্য করেছিল৷ 17 যীশু যখন লাসারকে কবর থেকে বেরিয়ে আসতে বলেন, আর তাকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করে তোলেন, তখন য়ে সব লোক সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিল তার সে বিষয়ে সকলকে বলতে লাগল৷ 18 এই কারণেই লোকেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এল, কারণ তারা শুনেছিল, য়ে তিনিই ঐ অলৌকিক চিহ্নকার্য় করেছেন৷ 19 তখন ফরীশীরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘তোমরা দেখলে, আমাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হল৷ দেখ, আজ সারা জগত্ তাঁরই পেছনে ছুটছে৷’ 20 নিস্তারপর্ব উপলক্ষে উপাসনা করার জন্য যাঁরা জেরুশালেমে এসেছিল, তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রীকও ছিল৷ 21 তারা গালীলের বৈত্সৈদা থেকে য়ে ফিলিপ এসেছিলেন, তাঁর কাছে গেল, আর তাঁকে অনুরোধের সুরে বলল, ‘মহাশয় আমরা যীশুর সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে চাই৷’ 22 ফিলিপ এসে একথা আন্দরিয়কে জানালেন৷ তখন আন্দরিয় ও ফিলিপ এসে যীশুকে তা বললেন৷ 23 যীশু তখন তাদের বললেন, ‘মানবপুত্রের মহিমান্বিত হওযার সময় হয়েছে৷ 24 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, গমের একটি দানা যদি মাটিতে পড়ে মরে না যায়, তবে তা একটি দানাই থেকে যায়৷ কিন্তু তা যদি মাটিতে পড়ে মরে যায়, তবে তার থেকে আরো অনেক দানা উত্পন্ন হয়৷ 25 য়ে ব্যক্তি নিজের জীবনকে ভালবাসে সে তা হারাবে; কিন্তু য়ে এই জগতে তার জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে, সে তা রাখবে৷ সে অনন্ত জীবন পাবে৷ 26 কেউ যদি আমার সেব করে তবে অবশ্যই সে আমাকে অনুসরণ করবে৷ আর আমি য়েখানে থাকি আমার সেবকও সেখানে থাকবে৷ কেউ যদি আমার সেবা করে তবে পিতা তাকে সম্মানিত করবেন৷ 27 ‘এখন আমার অন্তর খুব বিচলিত৷ আমি কি বলব, ‘পিতা? এই কষ্ট ভোগের মুহূর্ত থেকে আমায় রক্ষা কর?’ না, কারণ সেই সময় এসেছে এবং কষ্ট ভোগ করার উদ্দেশ্যেই আমি এসেছি৷ 28 পিতা, তোমার নামকে মহিমান্বিত কর!’তখন স্বর্গ থেকে এক রব ভেসে এল, ‘আমি এঁকে মহিমান্বিত করেছি, আর আমি আবার তাঁকে মহিমান্বিত করব৷’ 29 য়ে লোকেরা সেখানে ভীড় করেছিল, তারা সেই রব শুনে বলতে লাগল, এটা তো মেঘ গর্জন হোল৷আবার কেউ কেউ বলল, ‘একজন স্বর্গদূত ওঁর সঙ্গে কথা বললেন৷’ 30 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘আমার জন্য নয়, তোমাদের জন্যই ঐ রব৷ 31 এখন জগতের বিচারের সময়৷ এই জগতের শাসককে দূরে নিক্ষেপ করা হবে৷ 32 আর যখন আমাকে মাটি থেকে উঁচুতে তোলা হবে, তখন আমি আমার কাছে সকলকেই টেনে আনব৷’ 33 যীশুর কিভাবে মৃত্যু হতে যাচ্ছে, তাই জানাতে যীশু এই কথা বললেন৷ 34 এর উত্তরে লোকেরা তাঁকে বলল, ‘আমরা মোশির দেওযা বিধি-ব্যবস্থা থেকে শুনেছি য়ে খ্রীষ্ট চিরকাল বাঁচবেন৷ তাহলে আপনি কিভাবে বলছেন য়ে, ‘মানবপুত্রকে উঁচুতে তোলা হবে? এই ‘মানবপুত্র’ তবে কে?’ 35 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘আর সামান্য কিছু সময়ের জন্য তোমাদের মধ্যে আলো থাকবে৷ যতক্ষণ তোমরা আলো পাচ্ছ, তারই মধ্য দিয়ে চল৷ তাহলে অন্ধকার তোমাদের আচ্ছন্ন করবে না৷ য়ে লোক অন্ধকারে চলে সে কোথায় যাচ্ছে তা জানে না৷ 36 যতক্ষণ তোমাদের কাছে আলো আছে, সেই আলোতে বিশ্বাস কর, তাতে তোমরা আলোর সন্তান হবে৷’ এই কথা বলে যীশু সেখান থেকে চলে গেলেন ও তাদের কাছ থেকে নিজেকে গোপন রাখলেন৷ 37 যদিও যীশু তাদের চোখের সামনেই প্রচুর অলৌকিক চিহ্নকার্য় করলেন, তবু তারা তাঁকে বিশ্বাস করল না৷ 38 ভাববাদী যিশাইয় বলেছিলেন:‘প্রভু, আমাদের এই বার্তা কে বিশ্বাস করেছে? আর কার কাছেই বা প্রভুর পরাক্রম প্রকাশ পেয়েছে?’যিশাইয় 53:1 39 এই কারণেই তারা বিশ্বাস করতে পারে নি, কারণ যিশাইয় আবার বলেছেন, 40 ‘ঈশ্বর তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন৷ ঈশ্বর তাদের অন্তর কঠিন করেছেন যাতে তারা চোখ দিয়ে দেখতে না পায়, অন্তর দিয়ে বুঝতে না পারে এবং ভাল হবার জন্য আমার কাছে না আসে৷’যিশাইয় 6:10 41 যিশাইয় একথা বলেছিলেন, কারণ তিনি যীশুর মহিমা দেখেছিলেন আর তিনি তাঁর বিষয়েই বলেছিলেন৷ 42 অনেকে, এমন কি ইহুদী নেতাদের মধ্যেও অনেকে, তাঁর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করল; কিন্তু তারা ফরীশীদের ভয়ে প্রকাশ্যে তা স্বীকার করল না, পাছে তারা ইহুদীদের সমাজ-গৃহ থেকে বহিষ্কৃত হয়৷ 43 কারণ তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওযা প্রশংসা অপেক্ষা মানুষের কাছ থেকে পাওযা প্রশংসা বেশী ভালবাসত৷ 44 যীশু চিত্কার করে বললেন, ‘য়ে আমাকে বিশ্বাস করে সে, প্রকৃতপক্ষে যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁকেই বিশ্বাস করে৷ 45 আর য়ে আমায় দেখে সে, যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁকেই দেখতে পায়৷ 46 আমি এ জগতে আলো রূপে এসেছি যাতে য়ে আমায় বিশ্বাস করে তাকে য়েন অন্ধকারে থাকতে না হয়৷ 47 ‘আর য়ে কেউ আমার কথা শোনে অথচ তা মেনে চলে না, তার বিচার করতে আমি চাই না, কারণ আমি জগতের বিচার করতে আসিনি, এসেছি জগতকে রক্ষা করতে৷ 48 য়ে কেউ আমাকে অগ্রাহ্য় করে ও আমার কথা গ্রহণ না করে, তার বিচার করার জন্য একজন বিচারক আছেন৷ আমি য়ে বার্তা দিয়েছি শেষ দিনে সেই বার্তাই তার বিচার করবে৷ 49 কারণ আমি নিজে থেকে একথা বলছি না, বরং পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি আমাকে কি বলতে হবে বা কি শিক্ষা দিতে হবে তা আদেশ করেছেন৷ 50 আমি জানি য়ে তাঁর আদেশ থেকেই অনন্ত জীবন আসে৷ আমি সেই সকল কথা বলি যা পিতা আমায় বলেছেন৷’
1 ইহুদীদের নিস্তারপর্বের ঠিক পূর্বে যীশু বুঝতে পারলেন, য়ে এই জগত ছেড়ে পিতার কাছে তাঁর যাবার সময় হয়ে এসেছে৷ যীশু পৃথিবীতে তাঁর আপনজনদের সব সময় ভালবেসেছেন৷ এবার তিনি তাদের প্রতি তাঁর ভালবাসার চূড়ান্ত প্রমাণ দিলেন৷ 2 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা সান্ধ্য় আহার করছিলেন৷ দিযাবল ইতিমধ্যে শিমোন ঈষ্করিযোতের ছেলে যিহূদাকে প্ররোচিত করেছে যীশুকে শত্রুর হাতে তুলে দেওযার জন্য৷ 3 যীশু বুঝলেন য়ে পিতা তাঁকে সব কিছুর ওপর ক্ষমতা দিয়েছেন, তিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন, আর ঈশ্বরের কাছে ফিরে যাচ্ছেন৷ 4 তখন তিনি ভোজের আসর থেকে উঠে দাঁড়ালেন, তাঁর উপরের জামাটা খুলে রেখে একটি গামছা কোমরে জড়ালেন৷ 5 তারপর গামলায় জল ঢেলে শিষ্যদের পা ধুইয়ে দিতে লাগলেন, আর য়ে গামছাটি কোমরে জড়িয়ে ছিলেন সেটি দিয়ে তাঁদের পা মুছিয়ে দিতে লাগলেন৷ 6 এইভাবে তিনি শিমোন পিতরের কাছে এলে পিতর যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কেন আমার পা ধুইয়ে দেবেন?’ 7 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি যা করছি, তুমি এখন তা বুঝতে পারছ না, কিন্তু পরে বুঝবে৷’ 8 পিতর তাঁকে বললেন, ‘আপনি কখনও আমার পা ধুইয়ে দেবেন না৷’যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি যদি তোমার পা না ধুইয়ে দিই, তাহলে আমার সঙ্গে তোমার কোন সম্পর্ক থাকবে না৷’ 9 শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কেবল আমার পা নয়, হাত ও মাথা ধুইয়ে দিন!’ 10 যীশু তাঁকে বললেন, ‘য়ে স্নান করেছে তার পা ধোযা ছাড়া আর কিছু দরকার নেই, আর তো সর্বাঙ্গ পরিষ্কার হয়েছে৷ তোমরাও পরিষ্কার হয়েছ, কিন্তু সকলে নও৷’ 11 যীশু জানতেন য়ে একজন তাঁকে ধরিয়ে দেবে, সেই কারণেই তিনি বললেন, ‘তোমরা সকলে পরিষ্কার নও৷’ 12 তাদের পা ধোযানো শেষ করে তিনি আবার তাঁর উপরের জামাটি পরলেন ও টেবিলে তাঁর জায়গায় ফিরে এসে তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের প্রতি কি করলাম তা বুঝতে পারলে? 13 তোমরা আমায় ‘গুরু’ ও ‘প্রভু’ বলে থাকো; আর তোমরা তা ঠিকই বল, কারণ আমি তা-ই৷ 14 তাই আমি প্রভু ও গুরু হয়ে যদি তোমাদের পা ধুইয়ে দিই, তাহলে তোমাদেরও উচিত পরস্পরের পা ধোযানো৷ 15 আমি তোমাদের কাছে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম, য়েন আমি তোমাদের প্রতি য়েমন করলাম, তোমরাও তেমনি কর৷ 16 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, চাকর তার মনিবের থেকে বড় নয়, আর দূত তার প্রেরণকর্তার থেকে বড় নয়৷ 17 য়েহেতু তোমরা এসব জান, এইগুলি পালন কর, তাহলে তোমরা সুখী হবে৷ 18 ‘আমি তোমাদের সকলের বিষয়ে বলছি না৷ আমি জানি, কাদের আমি মনোনীত করেছি৷ কিন্তু শাস্ত্রে য়ে কথা লেখা হয়েছে তা অবশ্যই পূর্ণ হবে, ‘য়ে আমার সঙ্গে আহার করল, সেই আমার বিরুদ্ধে গেল৷’ 19 এসব ঘটবার আগেই আমি তোমাদের এসব বলছি, যাতে যখন এসব ঘটবে, তোমরা বিশ্বাস করবে য়ে আমিই তিনি৷ 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমি যাকে পাঠাবো তাকে য়ে গ্রহণ করবে, সে আমাকেই গ্রহণ করবে৷ আর য়ে আমাকে গ্রহণ করে, আমায় যিনি পাঠিয়েছেন, সে তাঁকেও গ্রহণ করে৷’ 21 এই কথা বলার পর যীশু খুবই উদ্বিগ্ন হলেন, আর খোলাখুলিই বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে ধরিয়ে দেবে৷’ 22 শিষ্যরা পরস্পরের দিকে তাকাতে লাগলেন, আদৌ বুঝতে পারলেন না কার বিষয়ে তিনি বলছেন৷ 23 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে একজন ছিলেন যাকে যীশু খুবই ভালবাসতেন, তিনি যীশুর গায়ের ওপর হেলান দিয়ে ছিলেন৷ 24 শিমোন পিতর এই শিষ্যকে ইশারা করলেন এবং যীশুকে জিজ্ঞেস করতে বললেন য়ে উনি কার সম্পর্কে বলছেন৷ 25 তখন তিনি যীশুর বুকের উপর ঝুঁকে পড়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘প্রভু, সে কে?’ 26 যীশু বললেন, ‘আমি রুটির টুকরোটি বাটিতে ডুবিয়ে যাকে দেব সে-ই সেই লোক৷’ এরপর তিনি রুটির টুকরো ডুবিয়ে শিমোন ঈষ্করিযোতের ছেলে যিহূদাকে দিলেন৷ 27 যিহূদা রুটির টুকরোটি নেওযার পর শয়তান তার মধ্যে ঢুকে পড়ল৷ এরপর যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি যা করতে যাচ্ছ তা তাড়াতাড়ি করোগে যাও৷’ 28 কিন্তু যাঁরা তাঁর সঙ্গে খাবার টেবিলে খেতে বসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউই বুঝতে পারলেন না তিনি কেন তাকে একথা বললেন৷ 29 কেউ কেউ মনে করলেন, যিহূদার কাছে টাকার থলি আছে, তাই হয়তো যীশু তাকে বললেন, পর্বের জন্য যা যা প্রযোজন তা কিনে আনতে যাও; অথবা হয়তো গরীবদের ওর থেকে কিছু দান করতে বলেছেন৷ 30 যিহূদা রুটির টুকরোটি গ্রহণ করে সঙ্গে সঙ্গে বাইরে চলে গেল৷ তখন রাত হয়ে গেছে৷ 31 যিহূদা সেখান থেকে চলে যাবার পর যীশু বললেন, ‘মানবপুত্র এখন মহিমান্বিত হলেন, আর ঈশ্বরও তাঁর মাধ্যমে মহিমান্বিত হলেন৷ 32 ঈশ্বর যদি তাঁর মাধ্যমে মহিমান্বিত হন, তবে ঈশ্বরও মানবপুত্রকে নিজের মাধ্যমে মহিমান্বিত করবেন, তিনি খুব শিগ্গিরই তা করবেন৷’ 33 ‘আমার প্রিয় সন্তানরা, আমি আর কিছু সময় তোমাদের সঙ্গে থাকব৷ তোমরা আমায় খুঁজবে, আর আমি য়েমন ইহুদী নেতাদের বলেছিলাম, আমি য়েখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে য়েতে পার না, সেই কথাই এখন তোমাদেরও বলছি৷ 34 আমি তোমাদের এক নতুন আদেশ দিচ্ছি, তোমরা পরস্পরকে ভালবেসো৷ আমি য়েমন তোমাদের ভালবাসি, তোমরাও তেমনি পরস্পরকে ভালবেসো৷ 35 তোমাদের পরস্পরের মধ্যে যদি ভালবাসা থাকে তবে এর দ্বারাই সকলে জানবে য়ে তোমরা আমার শিষ্য৷’ 36 শিমোন পিতর যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’যীশু বললেন, ‘য়েখানে এখন আমি যাচ্ছি, তুমি আমার পেছনে সেখানে আসতে পারবে না; কিন্তু পরে তুমি আমায় অনুসরণ করবে৷’ 37 পিতর তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, এখন কেন আমি আপনার সঙ্গে য়েতে পারি না? আমি আপনার জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়ে দেব৷’ 38 যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি কি সত্যি আমার জন্য প্রাণ দেবে? আমি তোমাকে সত্যি বলছি; কাল ভোরে মোরগ ডাকার আগেই তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷
1 ‘তোমাদের হৃদয় বিচলিত না হোক্৷ ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখো, আর আমার প্রতিও আস্থা রাখো৷ 2 আমার পিতার বাড়িতে অনেক ঘর আছে, যদি না থাকতো আমি তোমাদের বলতাম৷ আমি তোমাদের থাকবার একটা জায়গা ঠিক করতে যাচ্ছি৷ 3 সেখানে গিয়ে জায়গা ঠিক করার পর আমি আবার আসব ও তোমাদের আমার কাছে নিয়ে যাব, যাতে আমি য়েখানে থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পার৷ 4 আমি য়েখানে যাচ্ছি তোমরা সকলেই সে জায়গার পথ চেন৷’ 5 থোমা তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা আমরা জানি না! আমরা সেখানে যাবার পথ কিভাবে জানবো?’ 6 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমিই পথ, আমিই সত্য ও জীবন৷ পিতার কাছে যাবার আমিই একমাত্র পথ৷ 7 তোমরা যদি সত্যি আমাকে জেনেছ, তবে পিতাকেও জানতে পেরেছ৷ আর এখন থেকে তোমরা তাঁকে জেনেছ ও তাঁকে দেখেছ৷’ 8 ফিলিপ যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি পিতাকে আমাদের দেখান, তাহলেই যথেষ্ট হবে৷’ 9 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছি; আর ফিলিপ, তোমরা এখনও আমায় চিনলে না? য়ে কেউ আমায় দেখেছে সে পিতাকে দেখেছে৷ তোমরা কি করে বলছ, ‘পিতাকে আমাদের দেখান? 10 তুমি কি বিশ্বাস কর না য়ে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতাও আমার মধ্যে আছেন? আমি তোমাদের য়ে সকল কথা বলি তা নিজের থেকে বলি না৷ আমার মধ্যে যিনি আছেন সেই পিতা তাঁর নিজের কাজ করেন৷ 11 যখন আমি বলি য়ে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতাও আমার মধ্যে আছেন, তখন আমাকে বিশ্বাস কর৷ যদি তা না কর, তবে আমার দ্বারা কৃত সব অলৌকিক কাজের কারণেই বিশ্বাস কর৷ 12 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, য়ে আমার ওপর বিশ্বাস রাখে, আমি য়ে কাজই করি না কেন, সেও তা করবে, বলতে কি সে এর থেকেও মহান মহান কাজ করবে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি৷ 13 আর তোমরা আমার নামে যা কিছু চাইবে, আমি তা পূর্ণ করব, য়েন পিতা পুত্রের দ্বারা মহিমান্বিত হন৷ 14 তোমরা যদি আমার নামে আমার কাছে কিছু চাও, আমি তা পূর্ণ করব৷ 15 ‘তোমরা যদি আমায় ভালবাস তবে তোমরা আমার সমস্ত আদেশ পালন করবে৷ 16 আমি পিতার কাছে চাইব, আর তিনি তোমাদের আর একজন সাহায্যকারীদেবেন, য়েন তিনি চিরকাল তোমাদের সঙ্গে থাকেন৷ 17 তিনি সত্যের আত্মা,যাঁকে এই জগত সংসার মেনে নিতে পারে না, কারণ জগত তাঁকে দেখে না বা তাঁকে জানে না৷ তোমরা তাঁকে জান, কারণ তিনি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গেই থাকেন, আর তিনি তোমাদের মধ্যেই থাকবেন৷ 18 ‘আমি তোমাদের অনাথ রেখে যাবো না৷ আমি তোমাদের কাছে আসব৷ 19 আর কিছুক্ষণ পর এই জগত সংসার আর আমায় দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা আমায় দেখতে পাবে৷ কারণ আমি বেঁচে আছি বলেই তোমরাও বেঁচে থাকবে৷ 20 সেই দিন তোমরা জানবে য়ে আমি পিতার মধ্যে আছি, তোমরা আমার মধ্যে আছ, আর আমি তোমাদের মধ্যে আছি৷ 21 য়ে আমার নির্দেশ জানে এবং সেগুলি সব পালন করে, সেই আমায় প্রকৃত ভালবাসে৷ য়ে আমায় ভালবাসে, পিতাও তাঁকে ভালবাসেন৷ য়ে আমায় ভালবাসে, পিতাও তাকে ভালবাসেন আর আমিও তাকে ভালবাসি৷ আমি নিজেকে তার কাছে প্রকাশ করব৷’ 22 যিহূদা (যিহূদা ঈষ্করিযোত নয়) তাঁকে বলল, ‘প্রভু কেন আপনি জগতের কাছে নিজেকে প্রকাশ না করে আমাদের কাছেই নিজেকে প্রকাশ করবেন?’ 23 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘যদি কেউ আমায় ভালবাসে তবে সে আমার শিক্ষা অনুসারে চলবে, আর আমার পিতা তাকে ভালবাসবেন, আর আমরা তার কাছে আসব ও তার সঙ্গে বাস করব৷ 24 য়ে আমায় ভালবাসে না, সে আমার শিক্ষা পালন করে না৷ আর তোমরা আমার য়ে শিক্ষা শুনছ তা আমার নয়, কিন্তু যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এই শিক্ষা সেই পিতার৷ 25 ‘আমি তোমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতেই এইসব কথা বললাম, 26 কিন্তু সেই সাহায্যকারী পবিত্র আত্মা, যাঁকে পিতা আমার নামে পাঠিয়ে দেবেন, তিনি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দেবেন, আর আমি তোমাদের যা যা বলেছি, সে সকল বিষয় তিনি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেবেন৷ 27 ‘শান্তি আমি তোমাদের কাছে রেখে যাচ্ছি৷ আমার নিজের শান্তি আমি তোমাদের দিচ্ছি৷ জগত সংসার য়েভাবে শান্তি দেয় আমি সেইভাবে তা দিচ্ছি না৷ তোমাদের অন্তর উদ্বিগ্ন অথবা শঙ্কিত না হোক৷ 28 তোমরা শুনেছ য়ে, আমি তোমাদের বলেছি য়ে আমি যাচ্ছি আর আমি আবার তোমাদের কাছে আসব৷ তোমরা যদি আমায় ভালবাস তবে এটা জেনে খুশী হবে য়ে আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, কারণ পিতা আমার থেকে মহান৷ 29 তাই এসকল ঘটার আগেই আমি এসব তোমাদের এখন বললাম, যাতে ঘটলে পর তোমরা বিশ্বাস কর৷ 30 আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশীক্ষণ কথা বলব না, কারণ এই জগতের অধিপতি আসছে৷ আমার ওপর তার কোন দাবী নেই৷ 31 জগত সংসার যাতে জানতে পারে য়ে আমি পিতাকে ভালবাসি, তাই পিতা আমায় য়েমন আদেশ করেন আমি সেরকমই করি৷‘এখন এস! আমরা এখান থেকে যাই৷’
1 যীশু বললেন, ‘আমিই প্রকৃত আঙ্গুর লতা, আর আমার পিতা আঙ্গুর ক্ষেতের প্রকৃত কৃষক৷ 2 আমার য়ে শাখাতে ফল ধরে না, তিনি তা কেটে ফেলেন৷ আর য়ে শাখাতে ফল ধরে তাতে আরও বেশী করে ফল ধরার জন্য তিনি তা ছেঁটে পরিষ্কার করে দেন৷ 3 আমি তোমাদের য়ে শিক্ষা দিয়েছি তার ফলে তোমরা এখন শুচি হয়েছ৷ 4 তোমরা আমার সঙ্গে সংযুক্ত থাক, আর আমিও তোমাদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকব৷ শাখা য়েমন আঙ্গুর লতার সঙ্গে সংযুক্ত না থাকলে ফল ধরতে পারে না, তেমনি তোমরাও আমার সঙ্গে সংযুক্ত না থাকলে ফলবন্ত হতে পারবে না৷ 5 ‘আমিই আঙ্গুরলতা, আর তোমরা শাখা৷ য়ে আমাতে সংযুক্ত থাকে সে প্রচুর ফলে ফলবান হয়, কারণ আমাকে ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পার না৷ 6 যদি কেউ আমাতে না থাকে, তবে তাকে শুকিয়ে যাওযা শাখার মতো ছুঁড়ে ফেলা হয়৷ তারপর সেই সব শুকনো শাখাকে জড়ো করে তা আগুনে ছুঁড়ে পুড়িয়ে দেওযা হয়৷ 7 ‘যদি তোমরা আমাতে থাক, আর আমার শিক্ষা যদি তোমাদের মধ্যে থাকে, তাহলে তোমরা যা ইচ্ছা কর, তা পাবে৷ 8 তোমরা প্রচুর ফলে ফলবান হয়ে প্রমাণ কর য়ে, তোমরা আমার প্রকৃত শিষ্য; আর তাতেই আমার পিতা মহিমান্বিত হবেন৷ 9 পিতা য়েমন আমায় ভালবাসেন, আমিও তোমাদের তেমনি ভালবাসি৷ তোমরা আমার ভালবাসার মধ্যে থাকো৷ 10 আমি আমার পিতার আদেশ পালন করেছি ও তাঁর ভালবাসায় আছি৷ একইভাবে তোমরা যদি আমার আদেশ পালন কর তবে তোমরাও আমার ভালবাসায় থাকবে৷ 11 আমি এসব কথা তোমাদের বললাম, য়েন আমার য়ে আনন্দ আছে তা তোমাদের মধ্যেও থাকে; আর এইভাবে তোমাদের আনন্দ য়েন সম্পূর্ণ হয়৷ 12 আমার আদেশ এই, আমি য়েমন তোমাদের ভালোবেসেছি, তোমরাও তেমনি একে অপরকে ভালবাস৷ 13 বন্ধুদের জন্য প্রাণ দেওযার থেকে একজনের পক্ষে শ্রেষ্ঠ ভালবাসা আর কিছু নেই৷ 14 আমি তোমাদের যা যা আদেশ করছি তোমরা যদি তা পালন কর তাহলে তোমরা আমার বন্ধু৷ 15 আমি তোমাদের আর দাস বলছি না, কারণ মনিব কি করে, তা দাস জানে না৷ কিন্তু আমি তোমাদের বন্ধু বলছি, কারণ আমি পিতার কাছ থেকে যা যা শুনেছি সে সবই তোমাদের জানিয়েছি৷ 16 তোমরা আমায় মনোনীত করনি, বরং আমিই তোমাদের মনোনীত করেছি৷ আমি তোমাদের নিযোগ করেছি য়েন তোমরা যাও ও ফলবন্ত হও, আর তোমাদের ফল য়েন স্থাযী হয় এই আমার ইচ্ছা৷ তোমরা আমার নামে যা কিছু চাও, পিতা তা তোমাদের দেবেন৷ 17 আমি তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি য়ে তোমরা একে অপরকে ভালবাস৷ 18 ‘জগত সংসার যদি তোমাদের ঘৃণা করে, তবে একথা মনে রেখো য়ে, সে প্রথমে আমায় ঘৃণা করল৷ 19 তোমরা যদি এই জগতের হও, তবে জগত য়েমন তার আপনজনদের ভালবাসে, তেমনি তোমাদেরও ভালবাসবে৷ কিন্তু তোমরা এ জগতের নও৷ আমি এই জগত থেকে তোমাদের মনোনীত করেছি, এই কারণেই জগত সংসার তোমাদের ঘৃণা করে৷ 20 য়ে শিক্ষার কথা আমি তোমাদের বললাম তা স্মরণে রেখো, একজন দাস তার মনিবের থেকে বড় নয়৷ তারা যদি আমার ওপর নির্য়াতন করে থাকে তবে তারা তোমাদেরও নির্য়াতন করবে৷ যদি তারা আমার শিক্ষা পালন করে থাকে তবে তোমাদের শিক্ষা পালন করবে৷ 21 তারা আমার জন্যই তোমাদের প্রতি এগুলি করবে, কারণ যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে তারা জানে না৷ 22 আমি যদি না আসতাম ও তাদের সঙ্গে কথা না বলতাম, তাহলে তাদের পাপ হত না৷ কিন্তু আমি এসেছি, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি তাই তাদের এখন পাপ ঢাকবার কোন উপায় নেই৷ 23 য়ে আমায় ঘৃণা করে, সে আমার পিতাকেও ঘৃণা করে৷ 24 য়ে কাজ আর কেউ কখনও করে নি, সেরূপ কাজ যদি আমি তাদের মধ্যে না করতাম, তবে তাদের পাপের জন্য তারা দোষী হত না৷ কিন্তু এখন তারা আমার কাজ দেখেছে, আর তা সত্ত্বেও তারা আমাকে ও পিতাকে উভয়কেই ঘৃণা করেছে৷ 25 শাস্ত্রের এই বাক্য পূর্ণ হওযার জন্যই এসব ঘটল: ‘তারা অকারণে আমায় ঘৃণা করেছে৷’ 26 ‘আমি পিতার কাছ থেকে একজন সাহায্যকারী পাঠাবো, তিনি সত্যের আত্মা৷ তিনি যখন পিতার কাছ থেকে আসবেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন৷ 27 তোমরাও লোকদের কাছে অবশ্যই আমার কথা বলবে, কারণ তোমরা শুরু থেকে আমার সঙ্গে সঙ্গে আছ৷
1 ‘আমি তোমাদের এসব বলছি যাতে তোমরা তোমাদের বিশ্বাস ত্যাগ না কর৷ 2 তারা তোমাদের সমাজ-গৃহ থেকে বহিষ্কৃত করবে৷ বলতে কি এমন সময় আসছে, যখন তারা তোমাদের হত্যা করে মনে করবে য়ে তারা ঈশ্বরের সেবা করছে৷ 3 তারা এরূপ কাজ করবে কারণ তারা না জানে আমাকে, না জানে পিতাকে৷ 4 কিন্তু আমি তোমাদের এসব কথা বললাম, য়েন এসব ঘটবার সময় আসলে তোমরা মনে করতে পার য়ে, আমি তোমাদের এসব বিষয়ে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলাম৷‘শুরুতেই আমি তোমাদের এসব কথা বলিনি, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে ছিলাম৷ 5 কিন্তু যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এখন আমি তাঁর কাছে ফিরে যাচ্ছি, আর তোমাদের কেউ জিজ্ঞেস করছ না, ‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’ 6 এখন আমি তোমাদের এসব কথা বললাম, তাই তোমাদের অন্তর দুঃখে ভরে গেছে৷ 7 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি; আমার যাওযা তোমাদের পক্ষে ভাল, কারণ আমি যদি না যাই তাহলে সেই সাহায্যকারী তোমাদের কাছে আসবেন না৷ কিন্তু আমি যদি যাই তাহলে আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব৷ 8 যখন সেই সাহায্যকারী আসবেন তখন তিনি পাপ, ন্যায়পরায়ণতা ও বিচার সম্পর্কে জগতের মানুষকে চেতনা দেবেন৷ 9 তিনি পাপ সম্পর্কে চেতনা দেবেন কারণ তারা আমাতে বিশ্বাস করে না৷ 10 ন্যায়পরায়ণতা সম্পর্কে বোঝাবেন কারণ এখন আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, আর তোমরা আমায় দেখতে পাবে না৷ 11 বিচার সম্বন্ধে চেতনা দেবেন কারণ এই জগতের য়ে শাসক তার বিচার হয়ে গেছে৷ 12 ‘তোমাদের বলবার মতো আমার এখনও অনেক কথা আছে; কিন্তু সেগুলো তোমাদের গ্রহণ করার পক্ষে এখন অতিরিক্ত হয়ে যাবে৷ 13 সত্যের আত্মা যখন আসবেন, তখন তিনি সকল সত্যের মধ্যে তোমাদের পরিচালিত করবেন৷ তিনি নিজে থেকে কিছু বলেন না, কিন্তু তিনি যা শোনেন তাই বলেন, আর আগামী দিনে কি ঘটতে চলেছে তা তিনি তোমাদের কাছে বলবেন৷ 14 তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন, কারণ আমি যা বলি তাই তিনি গ্রহণ করবেন এবং তোমাদের তা বলবেন৷ 15 যা কিছু পিতার, তা আমার৷ এই কারণেই আমি বলেছি য়ে সত্যের আত্মা আমার নিকট থেকে সবই গ্রহণ করবেন এবং তোমাদের তা বলবেন৷ 16 ‘আর একটু পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না৷ অল্প একটু পরে আবার আমাকে দেখতে পাবে৷’ 17 তখন তাঁর শিষ্যদের মধ্যে কয়েকজন পরস্পরকে বলল, ‘উনি আমাদের কি বলতে চাইছেন, ‘কিছু পরে তোমরা আমায় দেখতে পাবে না, কিছু পরে তোমরা আবার আমায় দেখতে পাবে৷’ এ কথারই বা অর্থ কি, ‘কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি’?’ 18 তাঁরা আরও বললেন, ‘তিনি ‘অল্প কিছুকাল পরে’ বলতে কি বোঝাতে চাইছেন? তিনি কি বলছেন, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না৷’ 19 তারা তাঁকে কি জিজ্ঞেস করতে চান তা যীশু বুঝতে পারলেন৷ তাই তিনি তাঁদের বললেন, ‘যখন আমি বললাম, ‘অল্প কিছু পরে তোমরা আমায় দেখতে পাবে না, আবার অল্প কিছু পরে আবার আমায় দেখতে পাবে,’ এর দ্বারা আমি কি বোঝাতে চাইছি এই নিয়েই কি পরস্পরের মধ্যে আলোচনা করছ? 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা কাঁদবে, ব্যথিত হবে, কিন্তু জগত সংসার তাতে আনন্দিত হবে৷ তোমরা দুঃখে ভারাক্রান্ত হবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হবে৷ 21 স্ত্রীলোক সন্তান প্রসবের সময় কষ্ট পায়, কারণ তখন তার প্রসব বেদনার সময়; কিন্তু যখন সে সন্তান প্রসব করে, তখন সে তার কষ্টের কথা ভুলে যায়, জগতে একজন জন্মগ্রহণ করল জেনে সে আনন্দিত হয়৷ 22 ঠিক সেই রকম, তোমরাও এখন দুঃখ পাচ্ছ, কিন্তু আমি তোমাদের আবার দেখা দেব, আর তোমাদের হৃদয় তখন আনন্দে ভরে যাবে৷ তোমাদের সেই আনন্দ কেউ তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না৷ 23 সেদিন তোমরা আমার কাছে কিছু চাইবে না৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা আমার নামে যদি পিতার কাছে কিছু চাও, তিনি তোমাদের তা দেবেন৷ 24 এ পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু চাও নি৷ তোমরা চাও, তাহলে তোমরা পাবে৷ তোমাদের আনন্দ তখন পূর্ণতায় ভরে যাবে৷ 25 ‘আমি হেঁযালি করে তোমাদের এসব বলেছিলাম৷ সময় আসছে যখন আমি আর হেঁযালি করে তোমাদের কিছু বলব না, বরং পিতার বিষয় সরল ভাষায় তোমাদের কাছে ব্যক্ত করব৷ 26 সেই দিন যা চাইবার তা তোমরা আমার নামেই চাইবে, আর আমি তোমাদের বলছি না য়ে আমি তোমাদের হয়ে পিতার কাছে চাইব৷ 27 না, পিতা নিজেই তোমাদের ভালবাসেন, কারণ তোমরা আমায় ভালবেসেছ এবং তোমরা বিশ্বাস কর য়ে আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছি৷ 28 আমি পিতার কাছ থেকে এই জগতে এসেছি, এখন আমি এ জগত ছেড়ে আবার পিতার কাছে ফিরে যাচ্ছি৷’ 29 তাঁর শিষ্যরা বললেন, ‘দেখুন, এখন আপনি স্পষ্টভাবে বলছেন, কোনরকম হেঁযালি করে বলছেন না৷ 30 এখন আমরা বুঝলাম য়ে আপনি সব কিছুই জানেন৷ কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করার আগেই আপনি তার উত্তর দিতে পারেন৷ এজন্যই আমরা বিশ্বাস করি য়ে আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন৷’ 31 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তাহলে তোমরা এখন বিশ্বাস করছ? 32 শোন, সময় আসছে, বলতে কি এসে পড়েছে, যখন তোমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে য়ে যার নিজের জায়গায় চলে যাবে, আর আমায় একা ফেলে পালাবে, তবু আমি একা নই, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন৷ 33 ‘আমি তোমাদের এসব কথা বললাম যাতে তোমরা আমার মধ্যে শান্তি পাও৷ জগতে তোমরা কষ্ট পাবে, কিন্তু সাহসী হও! আমিই জগতকে জয় করেছি!’
1 এইসব কথা বলার পর যীশু স্বর্গের দিকে তাকিয়ে এই কথা বললেন, ‘পিতা, এখন সময় হয়েছে; তোমার পুত্রকে মহিমান্বিত কর, য়েন তোমার পুত্রও তোমাকে মহিমান্বিত করতে পারেন৷ 2 সমস্ত মানুষের উপর পুত্রকে তুমি অধিকার দিয়েছ যাতে তিনি তাদের সকলকে অনন্ত জীবন দিতে পারেন৷ 3 এই হল অনন্ত জীবন; তারা তোমাকে জানে য়ে তুমি একমাত্র সত্য ঈশ্বর ও তুমি যাঁকে পাঠিয়েছ সেই যীশু খ্রীষ্টকে জানে৷ 4 তুমি য়ে কাজ করার দাযিত্ব আমায় দিয়েছিলে, তা আমি শেষ করেছি ও পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করেছি৷ 5 তাই এখন তোমার সান্নিধ্যে আমায় মহিমান্বিত কর৷ হে পিতা, জগত সৃষ্টির পূর্বে তোমার কাছে আমার য়ে মহিমা ছিল, তুমি সেই মহিমায় এখন আমায় মহিমান্বিত কর৷ 6 ‘এই জগতের মধ্যে থেকে তুমি য়ে সব লোকদের আমায় দিয়েছ, আমি তাদের কাছে তোমার পরিচয় দিয়েছি৷ তারা তোমারই ছিল এবং তুমি তাদেরকে আমায় দিয়েছ, আর তারা তোমার শিক্ষানুসারে চলেছে৷ 7 এখন তারা বুঝেছে য়ে তুমি যা কিছু আমায় দিয়েছ তা তোমার কাছ থেকেই এসেছে৷ 8 তুমি আমায় য়ে শিক্ষা দিয়েছ তা আমি তাদের দিয়েছি, আর তা তারা গ্রহণও করেছে৷ তারা সত্যিই বুঝেছে য়ে আমি তোমারই কাছ থেকে এসেছি, আর তারা বিশ্বাস করে য়ে তুমি আমায় পাঠিয়েছ৷ 9 আমি তাদের জন্য এখন প্রার্থনা করছি৷ আমি সারা জগতের জন্য প্রার্থনা করছি না, কেবল সেই সকল লোকদের জন্য প্রার্থনা করছি যাদের তুমি দিয়েছ, কারণ তারা তোমার৷ 10 আমার যা কিছু তা তোমার, আর তোমার যা তা আমার৷ আর এদের মাধ্যমে আমি মহিমান্বিত হয়েছি৷ 11 ‘আমি আর এই জগতে থাকছি না, কিন্তু তারা এই জগতে থাকছে, আমি তোমারই কাছে যাচ্ছি৷ পবিত্র পিতা, য়ে নাম তুমি আমায় দিয়েছ, তোমার সেই নামের শক্তিতে তুমি তাদের রক্ষা কর৷ আমরা য়েমন এক, তেমনি তারা য়েন সকলে এক হতে পারে৷ 12 আমি যখন তাদের সঙ্গে ছিলাম, আমি তাদের নিরাপদে রেখেছিলাম৷ তুমি আমায় য়ে নাম দিয়েছ সেই নামের শক্তিতে তখন আমি তাদের রক্ষা করেছিলাম৷ আমি তাদের সাবধানে রক্ষা করেছি৷ তাদের মধ্যে কেউ বিনষ্ট হয় নি, একমাত্র ব্যতিক্রম সেই লোকটি, ধ্বংস হওযাই যার পরিণতি৷ শাস্ত্রের কথা সফল করার জন্যেই এই পরিণতি৷ 13 ‘এখন আমি তোমার কাছে আসছি, কিন্তু এই জগতে থাকতে থাকতে আমি এসব কথা বলছি, য়েন তারা আমার য়ে আনন্দ তা পরিপূর্ণরূপে পায়৷ 14 আমি তাদের তোমার শিক্ষা জানিয়েছি, কিন্তু জগত সংসার তাদের ঘৃণা করে, কারণ তারা এই জগতের নয়, য়েমন আমিও এই জগতের নই৷ 15 তাদের এই জগত থেকে নিয়ে যাবার জন্য আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি না, কিন্তু তাদের মন্দ শক্তির হাত থেকে রক্ষা কর৷ 16 তারা এই জগতের নয়, য়েমন আমিও এ জগতের নই৷ 17 ‘সত্যের দ্বারা তোমার সেবার জন্য তুমি তাদের পবিত্র কর৷ তোমার বাক্যই সত্যস্বরূপ৷ 18 তুমি য়েমন এ জগতে আমাকে পাঠিয়েছ, আমিও তাদের তেমনি জগতের মাঝে পাঠিয়েছি৷ 19 তাদের জন্য আমি তোমার সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করেছি, য়েন তারাও সত্যের মাধ্যমে তোমার সেবায় নিজেদের নিযুক্ত করতে পারে৷ 20 ‘আমি কেবল এদের জন্যই প্রার্থনা করছি না, এদের শিক্ষার মধ্য দিয়ে যাঁরা আমায় বিশ্বাস করবে তাদের জন্যও করছি৷ 21 পিতা, য়েমন তুমি আমাতে রয়েছ, আর আমি তোমাতে রয়েছি, তেমনি তারাও য়েন এক হয়৷ তারা য়েন আমাদের মধ্যে থাকে যাতে জগত সংসার বিশ্বাস করে য়ে তুমি আমাকে পাঠিয়েছ৷ 22 আর তুমি আমায় য়ে মহিমা দিয়েছ তা আমি তাদের দিয়েছি, যাতে আমরা য়েমন এক, তারাও তেমনি এক হতে পারে৷ 23 আমি তাদের মধ্যে, আর তুমি আমার মধ্যে থাকবে, এইভাবে তারা য়েন সম্পূর্ণভাবে এক হয়৷ জগত যাতে জানে য়ে তুমি আমায় পাঠিয়েছ৷ আর তুমি য়েমন আমায় ভালবেসেছ, তেমনি তুমি তাদেরও ভালবেসেছ৷ 24 ‘পিতা, আমি চাই, আমি য়েখানে আছি, তুমি যাদের আমায় দিয়েছ, তারাও য়েন আমার সঙ্গে সেখানে থাকে৷ আর তুমি আমায় য়ে মহিমা দিয়েছ তারা আমার সেই মহিমা য়েন দেখতে পায়, কারণ জগত সৃষ্টির আগেই তুমি আমায় ভালবেসেছ৷ 25 ন্যায়বান পিতা, জগত তোমায় জানে না, কিন্তু আমি তোমায় জানি৷ আর আমার এই শিষ্যরা জানে য়ে তুমি আমায় পাঠিয়েছ৷ 26 তুমি কে আমি তাদের কাছে তা প্রকাশ করেছি, আর এরপরেও আমি তাদের কাছে তা করতেই থাকব৷ তাহলে তুমি আমায় য়েমন ভালবেসেছ, তারা একইভাবে অন্যদের ভালবাসবে আর আমি তাদের মধ্যেই থাকব৷’
1 এই প্রার্থনার পর যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকার ওপারে চলে গেলেন৷ সেখানে একটি বাগান ছিল৷ যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেই বাগানের মধ্যে ঢুকলেন৷ 2 যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে প্রায়ই সেখানে আসতেন৷ এইজন্য যিহূদা সেই স্থানটি জানত৷ এই যিহূদা যীশুর সঙ্গে প্রতারণা করেছিল৷ 3 সে ফরীশীদের ও প্রধান যাজকদের কাছ থেকে একদল সৈনিক ও কিছু রক্ষী নিয়ে সেখানে এল৷ তাদের হাতে ছিল মশাল, লন্ঠন ও নানা অস্ত্র৷ 4 তখন যীশু, তাঁর প্রতি কি ঘটতে চলেছে সে সবই তাঁর জানা থাকার ফলে এগিয়ে গিয়ে বললেন, ‘তোমরা কাকে খুঁজছ?’ 5 তারা তাঁকে বলল, ‘নাসরতীয় যীশুকে৷’যীশু বললেন, ‘আমিই তিনি৷’ য়ে যিহূদা যীশুর বিরুদ্ধে গিয়েছিল সেও তাদেরই সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল৷ 6 তিনি যখন তাদের বললেন, ‘আমিই তিনি৷’ তখন তারা পিছু হটে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেল৷ 7 তাই আবার একবার তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কাকে খুঁজছ?’তারা বলল, ‘নাসরতীয় যীশুকে৷’ 8 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘আমি তো তোমাদের আগেই বলেছি, ‘আমিই তিনি৷’ সুতরাং যদি তোমরা আমাকেই খুঁজছ, তাহলে এদের য়েতে দাও৷’ 9 এটা ঘটল যাতে তাঁর আগের বক্তব্য যথার্থ প্রতিপন্ন হয়, ‘তুমি আমায় যাদের দিয়েছ তাদের কাউকে আমি হারাই নি৷’ 10 তখন শিমোন পিতরের কাছে একটা তরোয়াল থাকায় তিনি সেটা টেনে বের করে মহাযাজকের চাকরকে আঘাত করে তার ডান কান কেটে ফেললেন৷ সেই চাকরের নাম মল্ক৷ 11 তখন যীশু পিতরকে বললেন, ‘তোমার তরোযাল খাপে ভরো, য়ে পানপাত্র পিতা আমায় দিয়েছেন, আমাকে তা পান করতেই হবে৷’ 12 এরপর সৈন্যরা ও তাদের সেনাপতি এবং ইহুদী রক্ষীরা যীশুকে গ্রেপ্তার করে বেঁধে প্রথমে হাননের কাছে নিয়ে গেল৷ 13 সেই বছর যিনি মহাযাজক ছিলেন৷ সেই কায়াফার শ্বশুর এই হানন৷ 14 এই কাযাফা ইহুদী নেতাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন য়ে, জনস্বার্থে এক জনের মরণ হওযা ভালো৷ 15 শিমোন পিতর ও আর একজন শিষ্য যীশুর পেছনে পেছনে গেলেন৷ এই শিষ্যর সঙ্গে মহাযাজকের চেনা পরিচয় ছিল, তাই তিনি যীশুর সঙ্গে মহাযাজকের বাড়ির উঠোনে ঢুকলেন; কিন্তু পিতর ফটকের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলেন৷ 16 তখন মহাযাজকের পরিচিত শিষ্য বাইরে এসে য়ে বালিকাটি ফটক পাহারায় ছিল তাকে বলে পিতরকে ভেতরে নিয়ে গেলেন৷ 17 তখন দ্বাররক্ষীরা পিতরকে বলল, ‘তুমিও সেই লোকটার শিষ্যদের মধ্যে একজন নও কি?’পিতর বললেন, ‘না, আমি নই!’ 18 চাকররা ও মন্দিরের রক্ষীরা শীতের জন্য কাঠ কয়লার আগুন তৈরী করে তার চারপাশে দাঁড়িয়ে আগুন পোযাচ্ছিল৷ পিতরও তাদের সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে আগুন পোযাচ্ছিলেন৷ 19 এরপর মহাযাজক যীশুকে তাঁর শিষ্যদের বিষয়ে ও তাঁর শিক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করতে লাগলেন৷ 20 যীশু এর উত্তরে তাঁকে বললেন, ‘আমি সর্বদাই সকলের কাছে প্রকাশ্যে কথা বলেছি৷ আমি মন্দিরের মধ্যে ও সমাজ-গৃহেতে য়েখানে ইহুদীরা একসঙ্গে সমবেত হয় সেখানে সব সময় শিক্ষা দিয়েছি৷ আর আমি কখনও কোন কিছু গোপনে বলিনি৷ 21 তোমরা আমায় কেন সে বিষয়ে প্রশ্ন করছ? যাঁরা আমার কথা শুনেছে তাদেরই জিজ্ঞেস কর আমি তাদের কি বলেছি৷ আমি কি বলেছি তারা নিশ্চয়ই জানবে!’ 22 তিনি যখন একথা বলছেন, তখন সেই মন্দির রক্ষীবাহিনীর একজন য়ে সেখানে দাঁড়িয়েছিল সে যীশুকে এক চড় মেরে বলল, ‘তোর কি সাহস, তুই মহাযাজককে এরকম জবাব দিলি!’ 23 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘আমি যদি অন্যায় কিছু বলে থাকি, তবে সকলকে বল কি অন্যায় বলেছি; কিন্তু আমি যদি সত্যি কথা বলে থাকি তাহলে তোমরা আমায় মারছ কেন?’ 24 এরপর হানন, যীশুকে মহাযাজক কায়াফার কাছে পাঠিয়ে দিলেন৷ যীশু তখনও বাঁধা অবস্থায় ছিলেন৷ 25 এদিকে শিমোন পিতর সেখানে দাঁড়িয়ে আগুন পোযাচ্ছিলেন, লোকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমিও কি ওর শিষ্যদের মধ্যে একজন?’ কিন্তু তিনি একথা অস্বীকার করে বললেন, ‘না, আমি নই৷’ 26 মহাযাজকের একজন চাকর, পিতর যার কান কেটে ফেলেছিলেন তার এক আত্মীয় বলল, ‘আমি ওর সঙ্গে তোমাকে সেই বাগানের মধ্যে দেখেছি, ঠিক বলেছি না?’ 27 তখন পিতর আবার একবার অস্বীকার করলেন; আর তখনই মোরগ ডেকে উঠল৷ 28 এরপর তারা যীশুকে কায়াফার বাড়ি থেকে রাজ্যপালের প্রাসাদে নিয়ে গেল৷ তখন ভোর হয়ে গিয়েছিল৷ তারা নিজেরা রাজ্যপালের প্রাসাদের ভেতরে য়েতে চাইল না, পাছে অশুচিহয়ে পড়ে, কারণ তারা নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে চাইছিল৷ 29 তারপর রাজ্যপাল পীলাত তাদের সামনে বেরিয়ে এসে বললেন, ‘তোমরা এই লোকটার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ এনেছ?’ 30 এর উত্তরে তারা পীলাতকে বলল, ‘এই লোক যদি দোষী না হত, তাহলে আমরা তোমার হাতে একে তুলে দিতাম না৷’ 31 তখন পীলাত তাদের বললেন, ‘একে নিয়ে যাও এবং তোমাদের বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে এর বিচার কর৷’ ইহুদীর তাকে বলল, ‘আমরা কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারি না৷’ 32 কিভাবে তাঁর মৃত্যু হবে সে বিষয়ে যীশু যা ইঙ্গিত করেছিলেন তা পূরণ করতেই এই ঘটনাগুলি ঘটল৷ 33 তখন পীলাত আবার প্রাসাদের মধ্যে গিয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’ 34 যীশু বললেন, ‘তুমি কি নিজে থেকে একথা বলছ, অথবা অন্য কেউ আমার বিষয়ে তোমাকে বলেছে?’ 35 পীলাত বললেন, ‘আমি কি ইহুদী? তোমার নিজের লোকেরা ও প্রধান যাজকেরা তোমাকে আমার হাতে সঁপে দিয়েছে৷ তুমি কি করেছ?’ 36 যীশু বললেন, ‘আমার রাজ্য এই জগতের নয়৷ যদি আমার রাজ্য এই জগতের হত তাহলে আমার লোকেরা ইহুদীদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করত; কিন্তু না, আমার রাজ্য এখানকার নয়৷’ 37 তখন পীলাত তাঁকে বললেন, ‘তাহলে তুমি একজন রাজা?’যীশু এর উত্তরে বললেন, ‘আপনি বলছেন য়ে আমি রাজা৷ আমি এই জন্যই জন্মেছিলাম, আর এই উদ্দেশ্যেই আমি জগতে এসেছি, য়েন সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিই৷ য়ে কেউ সত্যের পক্ষে আছে, সে আমার কথা শোনে৷’ 38 পীলাত তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সত্য কি?’ এই কথা জিজ্ঞেস করে তিনি পুনরায় ইহুদীদের কাছে গেলেন, আর তাদের বললেন, ‘আমি তো এই লোকটির মধ্যে কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না?’ 39 কিন্তু তোমাদের এমন এক রীতি আছে, সেই অনুসারে নিস্তারপর্বের সময়ে একজন বন্দীকে মুক্তি দিয়ে থাকি৷ বেশ তোমাদের কি ইচ্ছা, আমি তোমাদের জন্য ‘ইহুদীদের রাজাকে’ ছেড়ে দেব?’ 40 তারা আবার চিত্কার করে বলল, ‘একে নয়! বারাব্বাকে!’ এই বারাব্বা ছিল একজন বিদ্রোহী৷
1 তখন পীলাত আদেশ দিলেন য়ে যীশুকে চাবুক মারার জন্য নিয়ে যাওযা হোক৷ 2 সেনারা কাঁটালতা দিয়ে একটা মুকুট তৈরী করে সেটা যীশুর মাথায় পরিয়ে দিল৷ তারা যীশুকে বেগুনে রঙের পোশাক পরাল, 3 এরপর তাঁর কাছে এগিয়ে এসে বলতে লাগল, ‘ইহুদীদের রাজা দীর্ঘজীবি হোক!’ এই বলে তারা তাঁর গালে চড় মারতে লাগল৷ 4 পীলাত আর একবার বাইরে বেরিয়ে এসে তাদের বললেন, ‘শোন, আমি যীশুকে তোমাদের সামনে নিয়ে আসছি৷ আমি চাই য়ে, তোমরা বুঝবে আমি এর কোনই দোষ খুঁজে পাচ্ছি না৷’ 5 এরপর যীশু বাইরে এলেন, তখন তাঁর মাথায় কাঁটার মুকুট ও পরণে বেগুনে পোশাক ছিল৷ পীলাত তাদের বললেন, ‘এই দেখ, সেই মানুষ!’ 6 প্রধান যাজকরা ও মন্দিরের রক্ষীরা যীশুকে দেখে চিত্কার করে বলল, ‘ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দিয়ে ওকে মেরে ফেল!’পীলাত তাদের বললেন, ‘তোমরা নিজেরাই একে নিয়ে গিয়ে ক্রুশে দাও, কারণ আমি এর কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না৷’ 7 ইহুদীরা তাঁকে বলল, ‘আমাদের য়ে বিধি-ব্যবস্থা আছে, সেই ব্যবস্থানুসারে ওর প্রাণদণ্ড হওযা উচিত, কারণ ও নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবী করে৷’ 8 এই কথা শুনে পীলাত ভীষণ ভয় পেয়ে গেলেন৷ 9 তিনি আবার প্রাসাদের মধ্যে গেলেন৷ পীলাত যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কোথা থেকে এসেছ?’ কিন্তু যীশু এর কোন উত্তর দিলেন না৷ 10 তখন পীলাত যীশুকে বললেন, ‘তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাও না? তুমি কি জান না য়ে তোমাকে মুক্তি দেওযার বা ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার ক্ষমতা আমার আছে?’ 11 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘ঈশ্বর না দিলে আমার ওপর আপনার কোন ক্ষমতা থাকত না৷ তাই য়ে লোক আমাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছে সে আরও বড় পাপে পাপী৷’ 12 একথা শুনে পীলাত তাঁকে ছেড়ে দেবার জন্য চেষ্টা করলেন, কিন্তু ইহুদীরা চিত্কার করল, ‘যদি তুমি ওকে ছেড়ে দাও, তাহলে তুমি কৈসরের বন্ধু নও৷ য়ে কেউ নিজেকে রাজা বলবে, বুঝতে হবে সে কৈসরের বিরোধিতা করছে৷’ 13 এই কথা শোনার পর পীলাত যীশুকে আবার বাইরে নিয়ে এলেন ও বিচারালয়ে বসলেন৷ এই বিচারাসন ছিল ‘পাথরে বাঁধানো’ নামে জায়গাতে৷ ইহুদীদের ভাষায় একে ‘গব্বথা’ বলে৷ 14 সেই দিনটা ছিল নিস্তারপর্ব আযোজনের দিন৷তখন প্রায় বেলা বারোটা, পীলাত ইহুদীদের বললেন, ‘এই দেখ, তোমাদের রাজা৷’ 15 তখন তারা চিত্কার করতে লাগল, ‘ওকে দূর কর! দূর কর! ওকে ক্রুশে দিয়ে মার!’পীলাত তাদের বললেন, ‘আমি কি তোমাদের রাজাকে ক্রুশে দেব?’প্রধান যাজকেরা জবাব দিলেন, ‘কৈসর ছাড়া আমাদের আর কোন রাজা নেই৷’ 16 তখন পীলাত যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার জন্য তাদের হাতে তুলে দিলেন৷শেষ পর্যন্ত তারা যীশুকে হাতে পেল৷ 17 যীশু তাঁর নিজের ক্রুশ বইতে বইতে ‘মাথার খুলি’ নামে এক জায়গায় গেলেন৷ ইহুদীদের ভাষায় যাকে বলা হোত ‘গলগথা৷’ 18 সেখানে তারা যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করল৷ তাঁর সঙ্গে তাঁর দুপাশে আরও দুজনকে ক্রুশে দিল, যীশু ছিলেন তাদের মাঝখানে৷ 19 পীলাত যীশুর মাথার দিকে ক্রুশের ওপর একটি ফলক টাঙ্গিয়ে দিলেন৷ সেই ফলকে লেখা ছিল, ‘নাসরতীয় যীশু, ইহুদীদের রাজা৷’ 20 তখন অনেক ইহুদী সেই ফলকটি পড়ল, কারণ যীশুকে য়েখানে ক্রুশে দেওযা হয়েছিল তা নগরের কাছেই ছিল, আর সেই ফলকের লেখাটি ইহুদীদের ভাষা, গ্রীক ও ল্য়াটিন ভাষায় ছিল৷ 21 ইহুদীদের প্রধান যাজকেরা পীলাতকে বললেন, ‘ইহুদীদের রাজা’ লিখো না, তার পরিবর্তে লেখো, ‘এই লোক বলেছিল, আমি ইহুদীদের রাজা৷” 22 পীলাত বললেন, ‘আমি যা লিখেছি তা লিখেছি৷’ 23 যীশুকে ক্রুশে দিয়ে সেনারা যীশুর সমস্ত পোশাক নিয়ে চারভাগে ভাগ করে প্রত্যেকে এক এক ভাগ নিল৷ আর তাঁর উপরের লম্বা পোশাকটিও নিল, এটিতে কোন সেলাই ছিল না, ওপর থেকে নীচে পর্যন্ত সমস্তটাই বোনা৷ 24 তাই তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘এটাকে আর ছিঁড়ব না৷ আমরা বরং ঘুঁটি চেলে দেখি কে ওটা পায়৷’ শাস্ত্রের এই বাণী এইভাবে ফলে গেল:‘তারা নিজেদের মধ্যে আমার পোশাক ভাগ করে নিল, আর আমার পোশাকের জন্য ঘুঁটি চালল৷’গীতসংহিতা 22:18সৈনিকরা তাই করল৷ 25 যীশুর ক্রুশের কাছে তাঁর মা, মাসীমা ক্লোপার স্ত্রী মরিয়ম ও মরিয়ম মগ্দলিনী দাঁড়িয়েছিলেন৷ 26 যীশু তাঁর মাকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন আর য়ে শিষ্যকে তিনি ভালোবাসতেন, দেখলেন তিনিও সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন৷ তখন তিনি তাঁর মাকে বললেন, ‘হে নারী, ঐ দেখ তোমার ছেলে৷’ 27 পরে তিনি তাঁর সেই শিষ্যকে বললেন, ‘ঐ দেখ, তোমার মা৷’ আর তখন থেকে তাঁর মাকে সেই শিষ্য নিজের বাড়িতে রাখার জন্য নিয়ে গেলেন৷ 28 এরপর যীশু বুঝলেন য়ে সবকিছু এখন সম্পন্ন হয়েছে৷ শাস্ত্রের সকল বাণী য়েন সফল হয় তাই তিনি বললেন, ‘আমার পিপাসা পেয়েছে৷’ 29 সেখানে একটা পাত্রে সিরকা ছিল, তাই সৈন্যরা একটা স্পঞ্জ সেই সিরকায় ডুবিয়ে এসোব নলে করে তা যীশুর মুখের কাছে ধরল৷ 30 যীশু সেই সিরকার স্বাদ নেবার পর বললেন, ‘সমাপ্ত হল!’ এরপর তিনি মাথা নীচু করে প্রাণ ত্যাগ করলেন৷ 31 ঐ দিনটা ছিল আযোজনের দিন৷ য়েহেতু বিশ্রামবার একটি বিশেষ দিন, ইহুদীরা চাইছিল না য়ে দেহগুলি ক্রুশের ওপরে থাকে৷ তাই ইহুদীরা পীলাতের কাছে গিয়ে তাঁকে আদেশ দিতে অনুরোধ করল, য়েন ক্রুশবিদ্ধ লোকদের পা ভেঙ্গে দেওযা হয় যাতে তাড়াতাড়ি তাদের মৃত্যু হয় এবং মৃতদেহগুলি ঐ দিনই ক্রুশ থেকে নামিয়ে ফেলা যায়৷ 32 সুতরাং সেনারা এসে প্রথম লোকটির পা ভাঙ্গল, আর তার সঙ্গে যাকে ক্রুশে দেওযা হয়েছিল তারও পা ভাঙ্গল৷ 33 কিন্তু তারা যীশুর কাছে এসে দেখল য়ে তিনি মারা গেছেন, তখন তাঁর পা ভাঙ্গল না৷ 34 কিন্তু একজন সৈনিক যীশুর পাঁজরের নীচে বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করল, আর সঙ্গে সঙ্গে সেখান দিয়ে রক্ত ও জল বেরিয়ে এল৷ 35 এই ঘটনা য়ে দেখল সে এবিষয়ে সাক্ষ্য দিল তা আপনারা সকলেই বিশ্বাস করতে পারেন, আর তার সাক্ষ্য সত্য৷ আর সে জানে য়ে সে যা বলছে তা সত্য৷ 36 এই সকল ঘটনা ঘটল যাতে শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়: ‘তাঁর একটি অস্থিও ভাঙ্গবে না৷’ 37 আবার শাস্ত্রে আর এক জায়গায় আছে, ‘তারা যাঁকে বিদ্ধ করেছে তাঁরই দিকে দৃষ্টিপাত করবে৷’ 38 এরপর অরিমাথিযার য়োষেফ যিনি যীশুর শিষ্য ছিলেন, কিন্তু ইহুদীদের ভয়ে তা গোপনে রাখতেন, তিনি যীশুর দেহটি নিয়ে যাবার জন্য পীলাতের কাছে অনুমতি চাইলেন৷ পীলাত তাঁকে অনুমতি দিলে তিনি এসে যীশুর দেহটি নামিয়ে নিয়ে গেলেন৷ 39 নীকদীমও এসেছিলেন (য়োষেফের সঙ্গে)৷ এই সেই ব্যক্তি যিনি যীশুর কাছে আগে একরাতের অন্ধকারে দেখা করতে এসেছিলেন৷ নীকদীম আনুমানিক ত্রিশ কিলোগ্রাম গন্ধ-নির্যাস মেশানো অগুরুর প্রলেপ নিয়ে এলেন৷ 40 এরপর ইহুদীদের কবর দেওযার রীতি অনুসারে যীশুর দেহে সেই প্রলেপ মাখিয়ে তাঁরা তা মসীনার কাপড় দিয়ে জড়ালেন৷ 41 যীশু সেখানে ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন, তার কাছে একটি বাগান ছিল, সেই বাগানে একটি নতুন কবর ছিল সেখানে আগে কাউকে কখনও কবর দেওযা হয় নি৷ 42 এই কবরটি নিকটেই ছিল, যীশুর দেহ তাঁরা সেই কবরেব মধ্যে রাখলেন, কারণ ইহুদীদের বিশ্রামের দিনটি শুরু হতে চলেছিল৷
1 রবিবার দিন সকাল সকাল মরিয়ম মগ্দলিনী সেই সমাধির কাছে গেলেন, য়েখানে যীশুর দেহ রাখা ছিল৷ তখনও অন্ধকার ছিল৷ তিনি দেখলেন য়ে সমাধি গুহার মুখে য়ে বড় পাথরখানি ছিল তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে৷ 2 তখন তিনি শিমোন পিতর ও যীশুর সেই শিষ্য যাকে যীশু ভালোবাসতেন তাঁদেব কাছে ছুটে গেলেন৷ মরিয়ম বললেন, ‘তারা প্রভুকে সমাধি থেকে তুলে নিয়ে গেছে৷ আমরা কেউ জানি না, তারা কোথায় তাঁকে রেখেছে!’ 3 তখন পিতর ও সেই অন্য শিষ্য সেখান থেকে বেরিয়ে সমাধির কাছে গেলেন৷ 4 তাঁরা দুজনে এক সঙ্গে দৌড়াতে লাগলেন, কিন্তু সেই অন্য শিষ্য পিতরের থেকে আগে দৌড়ে সেই সমাধির কাছে প্রথমে পৌঁছালেন৷ 5 তিনি ঝুঁকে পড়ে দেখলেন, সেখানে সেই মসীনার কাপড়গুলি পড়ে আছে, তবু ভেতরে গেলেন না৷ 6 শিমোন পিতর যিনি তাঁর পেছনে পেছনে আসছিলেন তিনিও এসে পৌঁছালেন আর সমাধি গুহার মধ্যে ঢুকলেন৷ তিনি দেখলেন, মসীনার সেই কাপড়গুলি সেখানে পড়ে আছে৷ 7 আর কবর দেবার য়ে কাপড়টি দিয়ে যীশুর মুখ ও মাথা ঢাকা ছিল, সেটি ঐ মসীনার কাপড়ের সঙ্গে নেই, তা গোটানো অবস্থায় এক পাশে পড়ে আছে৷ 8 এরপর সেই শিষ্য যিনি প্রথমে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন তিনিও ভেতরে ঢুকলেন এবং সবকিছু দেখে বিশ্বাস করলেন৷ 9 কারণ শাস্ত্রে একথা বলা হয়েছে য়ে মৃতদের মধ্য থেকে তাঁকে অবশ্যই পুনরুত্থিত হতে হবে৷ সেটি তাঁরা তখনও বোঝেন নি৷ 10 এরপর সেই শিষ্যরা নিজেদের জায়গায় ফিরে গেলেন৷ 11 মরিয়ম কিন্তু সমাধির বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন৷ তিনি কাঁদতে কাঁদতে ঝুঁকে পড়ে সমাধির ভেতরটা লক্ষ্য করলেন৷ 12 আর দেখলেন শুভ্র পোশাক পরে দুজন স্বর্গদূত যীশুর দেহ য়েখানে শোযানো ছিল সেখানে বসে আছেন৷ একজন তাঁর মাথার দিকে, আর একজন তাঁর পায়ের দিকে৷ 13 তাঁরা মরিয়মকে বললেন, ‘নারী, তুমি কাঁদছ কেন?’মরিয়ম তাঁদের বললেন, ‘তারা আমার প্রভুকে নিয়ে গেছে, আর আমি জানি না তাঁকে কোথায় রেখেছে৷’ 14 একথা বলতে বলতে তিনি যীশুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন কিন্তু চিনতে পারলেন না য়ে উনি যীশু৷ 15 যীশু তাঁকে বললেন, ‘নারী, তুমি কাঁদছ কেন? তুমি কাকে খুঁজছ?’মরিয়ম তাঁকে বাগানের মালী মনে করে বললেন, ‘মহাশয়, আপনি যদি তাঁকে নিয়ে গিয়ে থাকেন তবে আমায় বলুন তাঁকে কোথায় রেখেছেন, আমি তাঁকে নিয়ে যাব৷’ 16 যীশু তাঁকে বললেন, ‘মরিয়ম৷’তিনি ফিরে তাকালেন, আর তাঁকে ইহুদীদের ভাষায় বললেন, ‘রব্বি’ যার অর্থ ‘গুরু’৷ 17 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমাকে ধরো না, কারণ আমি উর্দ্ধে পিতার কাছে এখনও যাইনি৷ কিন্তু তুমি আমার ভাইদের কাছে যাও, আর তাদের বল, ‘যিনি আমার পিতা ও তোমাদের পিতা আর আমার ঈশ্বর ও তোমাদের ঈশ্বর, উর্দ্ধে আমি তাঁর কাছে যাচ্ছি৷” 18 তখন মরিয়ম মগ্দলিনী শিষ্যদের কাছে গিয়ে এই খবর জানিয়ে বললেন, ‘আমি প্রভুকে দেখেছি!’ আর জানালেন য়ে প্রভু তাঁকে এই কথা বলেছেন৷ 19 দিনটা ছিল রবিবার, সেদিন সন্ধ্যায় শিষ্যরা একটি ঘরে জড়ো হলেন৷ ইহুদীদের ভয়ে তাঁরা ঘরের দরজায় চাবি দিয়ে দিলেন৷ এমন সময় যীশু এসে তাঁদের মাঝে দাঁড়ালেন, আর বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক৷’ 20 একথা বলার পর তিনি তাঁদেরকে তাঁর হাত ও পাঁজরের পাশটা দেখালেন৷ শিষ্যেরা প্রভুকে দেখতে পেয়ে খুবই আনন্দিত হলেন৷ 21 এরপর যীশু আবার তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক! পিতা য়েমন আমাকে পাঠিয়েছেন, আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি৷’ 22 এই বলে তিনি তাঁদের ওপর ফুঁ দিলেন, আর বললেন, ‘তোমরা পবিত্র আত্মা গ্রহণ কর৷ 23 যদি তোমরা কোন লোকের পাপ ক্ষমা কর, তবে তাদের পাপ ক্ষমা পাবে, আর যদি কারো পাপ ক্ষমা না কর তার পাপের ক্ষমা হবে না৷’ 24 কিন্তু যীশু যখন সেখানে এসেছিলেন তখন সেই বারোজন শিষ্য়ের একজন থোমা,যাঁর অপর নাম দিদুমঃ তিনি তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না৷ 25 অন্য শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, ‘আমরা প্রভুকে দেখেছি!’ কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমি যদি তাঁর দুহাতে পেরেকের চিহ্ন না দেখি, আর সেই পেরেক বিদ্ধ জায়গায় আমার আঙ্গুল না দিই, আর তাঁর পাঁজরের নীচে আমার হাত না দিই, তাহলে আমি কিছুতেই বিশ্বাস করব না৷’ 26 এক সপ্তাহ পর তাঁর শিষ্যরা আবার একটি ঘরের মধ্যে ছিলেন, আর সেদিন থোমা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন৷ ঘরেব দরজাগুলি তখন চাবি দেওযা ছিল৷ এমন সময়ে যীশু সেখানে এলেন ও তাঁদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক৷’ 27 এরপর তিনি থোমাকে বললেন, ‘এখানে তোমার আঙ্গুল দাও, আর আমার হাত দুটি দেখ৷ তোমার হাত বাড়িয়ে আমার পাঁজরের নীচে দাও৷ সন্দেহ কোরো না, বিশ্বাস কর৷’ 28 এর উত্তরে থোমা তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আমার, ঈশ্বর আমার৷’ 29 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি আমায় দেখেছ তাই বিশ্বাস করেছ৷ ধন্য তারা, যাঁরা আমাকে না দেখেও বিশ্বাস করে৷’ 30 যীশু তাঁর শিষ্যদের সামনে আরো অনেক অলৌকিক চিহ্নকার্য় করেছিলেন, যা এই বইতে সব লেখা হয় নি৷ 31 কিন্তু এসব লেখা হয়েছে যাতে তোমরা বিশ্বাস করতে পার য়ে যীশুই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র; আর এই বিশ্বাসের দ্বারা তাঁর নামের মধ্য দিয়ে তোমরা সকলে য়েন শাশ্বত জীবন লাভ করতে পার৷
1 এরপর তিবিরিযা হ্রদের ধারে যীশু আবার তাঁর শিষ্যদের দেখা দিলেন৷ এইভাবে তিনি দেখা দিয়েছিলেন: 2 শিমোন পিতর, থোমা য়াঁর অপর নাম দিদুমঃ, গালীলের কান্নাবাসী নথনেল, সিবদিয়ের ছেলেরা ও অপর দুজন শিষ্য, এঁরা সকলে এক জায়গায় ছিলেন৷ 3 শিমোন পিতর তাঁদের বললেন, ‘আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি৷’অপর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘আমরাও তোমার সঙ্গে যাব৷’ তাঁরা সকলে বেরিয়ে গেলেন এবং নৌকায় গিয়ে উঠলেন, কিন্তু সেই রাত্রে তাঁরা কিছুই ধরতে পারলেন না৷ 4 এইভাবে যখন ভোর হয়ে আসছে, এমন সময় যীশু তীরে এসে দাঁড়ালেন; কিন্তু শিষ্যরা তাঁকে চিনতে পারলেন না য়ে তিনি যীশু৷ 5 যীশু তাঁদের বললেন, ‘বাছারা, কিছু মাছ পেলে?’শিষ্যরা বললেন, ‘না৷’ 6 তিনি তাঁদের বললেন, ‘নৌকার ডান দিকে জাল ফেল তাহলে তোমরা কিছু মাছ পাবে৷’ সেইভাবে তাঁরা জাল ফেললে জালে এত মাছ পড়ল য়ে তাঁরা তা টেনে তুলতে পারলেন না৷ 7 তখন য়ে শিষ্যকে যীশু বেশী ভালবাসতেন, তিনি পিতরকে বললেন, ‘উনি প্রভু!’ তাই শিমোন যখন শুনলেন য়ে উনি প্রভু, তখন তিনি গায়ের উপর একটা কাপড় জড়িয়ে নিলেন কারণ তিনি তখন কাজের সুবিধার জন্য খালি গায়ে ছিলেন ও হ্রদের জলে ঝাঁপিয়ে পড়লেন৷ 8 কিন্তু অন্যান্য শিষ্যরা নৌকাতে করে তীরে এলেন৷ তাঁরা মাছ ভর্তি জালটা টেনে আনছিলেন৷ তাঁরা তীর থেকে বেশী দূরে ছিলেন না, প্রায় তিনশো ফুট দূরে ছিলেন৷ 9 ডাঙ্গায় উঠে তাঁরা দেখলেন সেখানে কাঠ কয়লার আগুন জ্বলছে, তার ওপর কিছু মাছ আর রুটিও আছে৷ 10 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা এখন য়ে মাছ ধরলে তার থেকে কিছু নিয়ে এস৷’ 11 শিমোন পিতর উঠে নৌকায় গেলেন এবং জাল টেনে তীরে তুললেন, সেই জালে একশো তিপান্নটা বড় মাছ ছিল, আর এত মাছেতেও সেই জাল ছেঁড়েনি৷ 12 যীশু তাঁদের বললেন, ‘এখানে এসে সকালের জলখাবার খেয়ে নাও৷’ কিন্তু শিষ্যদের মধ্যে কারোর জিজ্ঞাসা করার সাহস হল না, ‘আপনি কে?’ কারণ তাঁরা বুঝেছিলেন য়ে তিনিই প্রভু৷ 13 যীশু গিয়ে সেই রুটি নিয়ে তাঁদের দিলেন, আর সেই মাছ নিয়েও তাঁদের দিলেন৷ 14 মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের পর এই নিয়ে তৃতীয় বার যীশু তাঁর শিষ্যদের দেখা দিলেন৷ 15 তাঁরা খাওযা শেষ করবার পর যীশু শিমোন পিতরকে বললেন, ‘য়োহনের ছেলে শিমোন, এই লোকদের চেয়ে তুমি কি আমায় বেশী ভালবাসো?’পিতর তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন য়ে আমি আপনাকে ভালবাসি৷’যীশু পিতরকে বললেন, ‘আমার মেষশাবকদেরতত্ত্বাবধান কর৷’ 16 তিনি তাঁকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করলেন, ‘য়োহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমায় ভালবাসো?’ পিতর তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন য়ে আমি আপনাকে ভালবাসি৷’যীশু পিতরকে বললেন, ‘আমার মেষদের তত্ত্বাবধান কর৷’ 17 যীশু পিতরকে তৃতীয়বার বললেন, ‘য়োহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমায় ভালবাসো?’একথা তিনবার শোনায় পিতর দুঃখ পেলেন৷ তাই তিনি যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি সবই জানেন৷ আপনি জানেন য়ে আমি আপনাকে ভালবাসি৷’যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমার মেষদের তত্ত্বাবধান কর৷ 18 আমি তোমাকে সত্যি বলছি, যখন তুমি যুবক ছিলে, তখন তুমি তোমার নিজের কোমর বন্ধনী বাঁধতে আর য়েখানে মন চাইত য়েতে; কিন্তু যখন বৃদ্ধ হবে, তখন তুমি তোমার হাত বাড়িয়ে দেবে আর অন্য কেউ তোমার কোমর বন্ধনী পরিয়ে দেবে৷ আর য়েখানে তুমি য়েতে চাইবে না সেখানে নিয়ে যাবে৷’ 19 এই কথা বলে যীশু ইঙ্গিত করলেন, পিতর কি প্রকার মৃত্যু দ্বারা ঈশ্বরের গৌরব করবেন৷ এসব কথা বলার পর তিনি পিতরকে বললেন, ‘আমায় অনুসরণ কর৷’ 20 পিতর ঘুরে দেখলেন, যাঁকে যীশু ভালোবাসতেন সেই শিষ্য তাঁদের পেছনে আসছেন৷ এই শিষ্যই ভোজের সময় যীশুর বুকের ওপর হেলান দিয়েছিলেন, আর বলেছিলেন, ‘প্রভু, কে আপনাকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে?’ 21 তাই পিতর তাঁকে দেখতে পেয়ে যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, ওর কি হবে?’ 22 যীশু পিতরকে বললেন, ‘আমি যদি চাই য়ে, আমি না আসা পর্যন্ত ও থাকবে, তাতে তোমার কি? তুমি আমায় অনুসরণ কর৷’ 23 তাই ভাইদের মধ্যে একথা ছড়িয়ে গেল য়ে, সেই শিষ্য মরবে না৷ কিন্তু যীশু তাকে বলেন নি য়ে তিনি মরবেন না৷ কেবল বলেছিলেন, ‘আমি যদি চাই য়ে আমি না আসা পর্যন্ত সে এখানে থাকবে, তাতে তোমার কি?’ 24 ইনিই সেই শিষ্য যিনি এইসব বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন, আর তিনিই এইসব লিপিবদ্ধ করেছেন৷ আমরা জানি তাঁর সাক্ষ্য সত্য৷ 25 যীশু আরো অনেক কাজ করেছিলেন৷ সেগুলি যদি এক এক করে লেখা য়েত, তবে আমার ধারণা লিখতে লিখতে এত সংখ্য়ক বই হোত য়ে জগতে তা ধরতো না৷
1 প্রিয় থিয়ফিল, আমার প্রথম বইটিতে যীশু য়ে সব কাজ করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন তার বিবরণ ছিল৷ 2 আমি যা লিখেছি, তাতে শুরু থেকে তাঁর স্বর্গারোহণের দিন পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন এবং শিখিয়েছিলেন তার সব বিবরণ আছে৷ স্বর্গারোহণের পূর্বে যীশু তাঁর মনোনীত প্রেরিতদের, পবিত্র আত্মার সাহায্যে তাদের কি করণীয় তা জানিয়েছিলেন৷ 3 মৃত্যুর পর যীশু, তাঁর প্রেরিতদের কাছে দেখালেন য়ে তিনি জীবিত এবং অনেক পরাক্রম কার্য়্য় সাধন করে তিনি এর প্রমাণ দিলেন৷ মৃতদের মধ্য থেকে যীশুর পুনরুত্থানের পর চল্লিশ দিনের মধ্যে প্রেরিতর যীশুকে বহুবার দেখেছিলেন৷ এই সময়ে যীশু তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে নানা কথা বলেছিলেন৷ 4 আর এক সময় যখন তিনি তাঁদের সঙ্গে আহার করছিলেন, তখন আদেশ দিয়েছিলেন, য়েন তারা জেরুশালেম ছেড়ে না যান৷ যীশু বলেছিলেন, ‘পিতা তোমাদের য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, য়ে বিষয়ে এর আগেও আমি তোমাদের জানিয়েছিলাম, তোমরা সেই প্রতিশ্রুত বিষয় পাবার অপেক্ষায় জেরুশালেমে থেকো৷ 5 কারণ য়োহন জলে বাপ্তাইজ করতেন, কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে৷’ 6 এরপর প্রেরিতেরা একত্র হয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘প্রভু, এই সময় আপনি কি ইস্রায়েলকে তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন?’ 7 তিনি তাঁদের বললেন, ‘পিতা নিজেই কেবল সময় ও তারিখগুলি নির্ধারণ করেন, এসব বিষয় তোমরা জানতে পারবে না; 8 কিন্তু যখন পবিত্র আত্মা তোমাদের কাছে আসবেন, তখন তোমরা শক্তি পাবে আর তোমরা আমার সাক্ষী হবে৷ লোকদের কাছে তোমরা আমার কথা বলবে৷ প্রথমে তোমরা জেরুশালেমের লোকদের কাছে সাক্ষ্য দেবে তারপর সমগ্র যিহূদিযা ও শমরিযায় এমনকি জগতের শেষ সীমানা পর্যন্ত তোমরা আমার কথা বলবে৷’ 9 এই কথা বলার পর প্রেরিতদের চোখের সামনে তাঁকে আকাশে তুলে নেওযা হল৷ আর এক খানা মেঘ তাঁকে তাদের দৃষ্টির আড়াল করে দিল৷ 10 যীশু যখন যাচ্ছেন, আর প্রেরিতেরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন, ঠিক সেই সময সাদা ধবধবে পোশাক পরা দুই ব্যক্তি তাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন৷ 11 সেই দুই ব্যক্তি প্রেরিতদের বললেন, ‘হে গালীলের লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছ কেন? এই য়ে যীশু,যাকে তোমাদের সামনে থেকে স্বর্গে তুলে নেওযা হল, তাঁকে য়ে ভাবে তোমরা স্বর্গে য়েতে দেখলে, ঠিক সেই ভাবেই তিনি ফিরে আসবেন৷’ 12 এরপর তাঁরা জৈতুন পর্বতমালা থেকে নেমে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন৷ জেরুশালেম থেকে পাহাড়টির দূরত্ব ছিল এক বিশ্রামবারের পথ অর্থাত্ প্রায় আধ মাইল৷ 13 এরপর প্রেরিতেরা শহরে প্রবেশ করে তাঁরা য়ে বাড়িতে থাকতেন, তার উপরের তলার কামরায় গেলেন৷ এই প্রেরিতদের নাম ছিল; পিতর, য়োহন, যাকোব, আন্দরিয়, ফিলিপ, থোমা, বর্থলময়, মথি, আলফেয়ের ছেলে যাকোব, শিমোন যাকে দেশভক্ত বলা হত এবং যাকোবের ছেলে যিহূদা৷ 14 প্রেরিতেরা সকলেই একসঙ্গে সেখানে একই উদ্দেশ্যে সর্বদা প্রার্থনা করছিলেন৷ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন স্ত্রীলোক, যীশুর মা মরিয়ম ও তাঁর ভাইয়েরা৷ 15 ঐ দিনগুলিতে যখন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা একত্রিত হয়ে প্রার্থনা করছিলেন, সেখানে প্রায় এক’শ কুড়ি জন উপস্থিত ছিলেন৷ সেই সময় পিতর উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, 16 ‘ভাইয়েরা যিহূদা সম্পর্কে পবিত্র আত্মা দাযূদের মুখ দিয়ে য়ে কথা বহুপূর্বেই বলেছিলেন, শাস্ত্রের সেই কথা পূর্ণ হওযার প্রযোজন ছিল৷ যিহূদাই সেই ব্যক্তি য়ে যীশুর গ্রেপ্তারকারীদের পরিচালনা দিয়েছিল৷ যিহূদা ছিল আমাদেরই একজন, য়ে আমাদের পরিচর্য়া কাজের সহভাগীও ছিল৷’ 17 18 এই লোক তার এই অন্যায় কাজের দ্বারা অর্থ রোজগার করে তাই দিয়ে এক টুকরো জমি কিনেছিল; কিন্তু সে মাথাটা নিচু করে মাটিতে পড়ল, আর তার পেট ফেটে ভেতরের নাড়ী-ভুঁড়ি সব বেরিয়ে পড়ল৷ 19 যাঁরা জেরুশালেমে বাস করে, তারা সকলেই একথা জানে৷ তাই সেই জমিটিকে তাদের ভাষায় বলে হকলদামা যার অর্থ, ‘রক্তের ভূমি৷’ 20 বাস্তবিক, ‘গীতসংহিতায় লেখা আছে:‘তার গৃহ য়েন পরিত্যক্ত হয়; কেউ য়েন তার মধ্যে বাস না করে৷’ গীতসংহিতা 69:25আরও লেখা আছে: ‘আর অন্য কেউ তার স্থান দখল করুক৷’গীতসংহিতা 109:8 21 তাই য়োহন যখন বাপ্তাইজ করতে শুরু করেন, সেই সময় থেকে প্রভু যীশুর স্বর্গারোহণের সময় পর্যন্ত যতদিন প্রভু যীশু আমাদের সঙ্গে ছিলেন, সেই দিনগুলিতে যাঁরা সব সময় আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তাঁদের মধ্যে একজনকে আমাদের মনোনীত করা প্রযোজন৷ য়ে আমাদের দলে য়োগদান করবে, তাঁকে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে যীশুর পুনরুত্থানের সাক্ষী হতে হবে৷’ 22 23 তখন প্রেরিতেরা দুজন লোককে উপস্থিত করলেন, য়োষেফ যাকে বার্শব্বা বলে ডাকে যার অপর নাম যুষ্ট আর মত্তথিয়কে৷ 24 এরপর তারা প্রার্থনা সহকারে বললেন, ‘প্রভু, তুমি সকলের অন্তঃকরণ জান৷ এই দুজনের মধ্যে কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখিয়ে দাও৷ যিহূদা তার নিজের জায়গায় যাবার জন্য প্রেরিতরূপে এই সেবার কাজ ত্যাগ করে গেছে, তার জায়গায় কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখাও৷’ 25 26 এরপর তাঁরা ঐ দুজনের জন্য ঘুঁটি চাললেন আর মত্তথিয়ের নাম উঠল৷ এইভাবে তিনি এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে প্রেরিত বলে গন্য হলেন৷ 27 28 29 30 31 32
1 এরপর পঞ্চাশত্তমীর দিনটি এল, সেই দিনটিতে প্রেরিতেরা সকলে একই জায়গায় সমবেত ছিলেন৷ 2 সেই সময় হঠাত্ আকাশ থেকে ঝোড়ো হাওযার শব্দের মত প্রচণ্ড একটা শব্দ শোনা গেল, আর য়ে ঘরে তাঁরা বসেছিলেন, সেই ঘরের সর্বত্র তা ছড়িয়ে গেল৷ 3 তাঁরা তাঁদের সামনে আগুনের শিখার মতো কিছু দেখতে পেলেন, সেই শিখাগুলি তাদের উপর ছড়িয়ে পড়ল ও পৃথক পৃথক ভাবে তাঁদের প্রত্যেকের উপর বসল৷ 4 তাঁরা পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হলেন আর ভিন্ন ভাষায় কথা বলতে লাগলেন৷ পবিত্র আত্মাই তাদের এইভাবে কথা বলার শক্তি দিলেন৷ 5 সেই সময় প্রত্যেক জাতির থেকে ধার্মিক ইহুদীরা এসে জেরুশালেমে বাস করছিল৷ 6 সেই শব্দ শুনে বহুলোক সেখানে এসে জড়ো হল৷ তারা সকলে হতবাক হয়ে গেল, কারণ প্রত্যেকে তাদের নিজের নিজের ভাষায় প্রেরিতদের কথা বলতে শুনছিল৷ 7 এতে তারা আশ্চর্য হয়ে পরস্পর বলতে লাগল, ‘দেখ! এই য়ে লোকেরা কথা বলছে, এরা সকলে গালীলের লোক নয় কি! 8 তবে আমরা কেমন করে ওদের প্রত্যেককে আমাদের নিজের নিজের মাতৃভাষায় কথা বলতে শুনছি? 9 এখানে আমরা যাঁরা আছি, আমরা ভিন্ন ভিন্ন দেশের লোক; পার্থীয়, মাদীয়, এলমীয়, মিসপতামিযা, যিহূদিযা, কাপ্পাদকিযা, পন্ত, আশিযা, ফরুগিযা, পাম্ফুলিযা ও মিশর, 10 কুরীমীর লুবিযার কাছে কিছু অঞ্চলের লোক, রোম থেকে এসেছে এমন অনেক লোক এবং ইহুদী বা ইহুদী ধর্মে দীক্ষিত অনেকে৷ 11 ক্রীতীয় ও আরবীয় আমরা সকলেই আমাদের মাতৃভাষায় ঈশ্বরের মহাপরাক্রান্ত কাজের বর্ণনা এদের মুখে শুনেছি৷’ 12 তারা হতবুদ্ধি হয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘এর অর্থ কি? 13 কিন্তু অন্য লোকেরা বিদ্রূপের ভঙ্গীতে বলতে লাগল, ‘ওরা দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হয়েছে৷’ 14 তখন পিতর ঐ এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে জোর গলায় তাঁদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘হে আমার ইহুদী ভাইয়েরা, আজ জেরুশালেমে যত লোক বাস করেন তাদের সকলের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনাদের এর অর্থ জানা দরকার৷ 15 আপনারা যা মনে করছেন তা নয়, এই লোকেরা কেউ মাতাল নয়, কারণ এখন মাত্র সকাল ন’টা৷ 16 কিন্তু ভাববাদী য়োয়েল এবিষয়েই বলেছেন, 17 ‘ঈশ্বর বলছেন:শেষের দিনগুলিতে এরকমই হবে; শেষকালে আমি সকল লোকের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব, তাতে তোমাদের ছেলেমেয়েরা ভাববাণী বলবে, তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে, আর তোমাদের বৃদ্ধ লোকেরা স্বপ্ন দেখবে৷ 18 হ্যাঁ, আমি আমার সেবকদের, স্ত্রী ও পুরুষ সকলের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব, আর তারা ভাববানী বলবে৷ 19 আমি উর্দ্ধে আকাশে বিস্ময়কর সব লক্ষণ দেখাবো ও নীচে পৃথিবীতে নানা অদ্ভুত চিহ্ন, রক্ত, আগুন ও ধোঁযার কুণ্ডলী দেখাবো৷ 20 প্রভুর সেই মহান ও মহিমাময় দিন আসার আগে, সূর্য় কালো ও চাঁদ রক্তের মতো লাল হয়ে যাবে৷ 21 আর য়ে কেউ প্রভুর নামে ডাকবে, সে উদ্ধার পাবে৷’য়োয়েল 2:28-32 22 ‘হে ইহুদী ভাইয়েরা, একথা শুনুন; নাসরতীয় যীশুর দ্বারা ঈশ্বর বহু অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করে আপনাদের কাছে প্রমাণ দিয়েছেন য়ে তিনি সেই ব্যক্তি যাকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন; আর আপনারা এই ঘটনাগুলি জানেন৷ 23 যীশুকে আপনাদের হাতে সঁপে দেওযা হল, আর আপনারা তাঁকে হত্যা করলেন৷ মন্দ লোকদের দিয়ে আপনারা তাঁকে ক্রুশের উপর পেরেক বিদ্ধ করলেন৷ ঈশ্বর জানতেন য়ে এসব ঘটবে; আর তাই ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনা, যা তিনি বহুপূর্বেই নিরূপণ করেছিলেন৷ 24 যীশু মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করলেন, কিন্তু ঈশ্বর সেই বিভীষিকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করলেন৷ ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে তুলে আনলেন৷ মৃত্যু যীশুকে তার কবলে রাখতে সক্ষম হল না৷ 25 কারণ দাযূদ যীশুর বিষয়ে বলেছিলেন:‘আমি প্রভুকে সবসময়ই আমার সামনে দেখেছি; আমাকে স্থির রাখতে তিনি আমার ডানদিকে অবস্থান করছেন৷ 26 এইজন্য আমার অন্তর আনন্দিত, আর আমার জিভ উল্লাস করে৷ আমার এই দেহ ও প্রত্যাশায় জীবিত থাকবে৷ 27 কারণ তুমি আমার প্রাণ মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করবে না৷ তুমি তোমার পবিত্র ব্যক্তিকে ভয় পেতে দেবে না৷ 28 তোমার সান্নিধ্যে আমার জীবন তুমি আনন্দে ভরিয়ে দেবে৷ গীতসংহিতা 16:8-11 29 ‘আমার ভাইয়েরা, আমাদের সেই শ্রদ্ধেয় পূর্বপুরুষ দাযূদের বিষয়ে আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি য়ে, তিনি মারা গেছেন ও তাঁকে কবর দেওযা হয়েছে, আর আজও তাঁর কবর আমাদের মাঝে আছে৷ 30 কিন্তু তিনি একজন ভাববাদী ছিলেন এবং জানতেন ঈশ্বর শপথ করে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে, তাঁর বংশের একজনকে তাঁরই মতো রাজা করে সিংহাসনে বসাবেন৷ 31 পরে কি হবে তা আগেই জানতে পেরে দাযূদ যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে বলেছিলেন:‘তাঁকে মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করা হয় নি বা তাঁর দেহ কবরের মধ্যে ক্ষয় প্রাপ্ত হয় নি৷’ 32 কিন্তু ঈশ্বর মৃত্যুর পর যীশুকেই পুনরুত্থিত করেছেন; আর আমরা সকলে এই ঘটনার সাক্ষী আছি৷ আমরা সকলে তাঁকে দেখেছি৷ 33 যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওযা হল; এখন যীশু ঈশ্বরের কাছে তাঁর ডানদিকে অবস্থান করছেন৷ পিতা যীশুকে পবিত্র আত্মা দিয়েছেন, পিতা তাঁকে সেই পবিত্র আত্মা দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ এখন যীশু সেই পবিত্র আত্মাকে ঢেলে দিলেন, তোমরা এখন তাই দেখছ ও শুনছ৷ 34 কারণ দাযূদ স্বর্গারোহন করেন নি, আর তিনি নিজে একথা বলছেন,‘প্রভু ঈশ্বর আমার প্রভুকে বলছেন; 35 য়ে পর্যন্ত না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি, তুমি আমার ডানদিকে বস৷’গীতসংহিতা 110:1 36 ‘তাই ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবার নিশ্চিতভাবে জানুক য়ে যাকে আপনারা ক্রুশবিদ্ধ করেছিলেন, সেই যীশুকেই ঈশ্বর প্রভু ও খ্রীষ্ট উভয়ই করেছেন৷’ 37 লোকেরা এই কথা শুনে খুবই দুঃখিত হল৷ তারা পিতর ও অন্যান্য প্রেরিতদের বলল, ‘ভাইয়েরা, আমরা কি করব?’ 38 পিতর তাঁদের বললেন, ‘আপনারা মন-ফিরান, আর প্রত্যেকে পাপের ক্ষমার জন্য যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হোন, তাহলে আপনারা দানরূপে এই পবিত্র আত্মা পাবেন৷ 39 কারণ এই প্রতিশ্রুতি আপনাদের জন্য, আপনাদের সন্তানদের জন্য আর যাঁরা দূরে আছে তাদেরও জন্য৷ আমাদের ঈশ্বর প্রভু তাঁর নিজের কাছে যাদের ডেকেছেন, এই দান তাদের সকলের জন্য৷’ 40 পিতর তাঁদের আরো অনেক কথা বলে সাবধান করে দিলেন; তিনি তাঁদের অনুনয়ের সুরে বললেন, ‘বর্তমান কালের মন্দ লোকদের থেকে নিজেদের বাঁচান!’ 41 যাঁরা পিতরের কথা গ্রহণ করলেন, তাঁরা বাপ্তিস্ম নিলেন৷ এর ফলে সেদিন কম বেশী তিন হাজার লোক খ্রীষ্টবিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত হলেন৷ 42 বিশ্বাসীরা প্রায়ই একত্র হয়ে মনোয়োগের সঙ্গে প্রেরিতদের শিক্ষা গ্রহণ করতেন৷ বিশ্বাসীবর্গ নিজেদের মধ্যে সব কিছু ভাগ করে নিতেন এবং একই সঙ্গে আহার ও প্রার্থনা করতেন৷ 43 প্রেরিতেরা অনেক অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করতে লাগলেন; প্রত্যেকের অন্তরে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গভীর ভক্তি ছিল৷ 44 বিশ্বাসীরা সকলে একসঙ্গে থাকতেন এবং সবকিছু নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতেন৷ 45 তাঁরা তাঁদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে, যার য়েমন প্রযোজন সেই অনুসারে ভাগ করে নিতেন৷ 46 তাঁরা প্রতিদিন মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে একত্রিত হতেন, একই উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে তারা সেখানে য়েতেন৷ তাঁরা তাঁদের বাড়িতে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন আর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে আনন্দের সঙ্গে খাদ্য গ্রহণ করতেন৷ 47 বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতেন, আর সকলেই তাঁদের ভালোবাসতেন৷ প্রতিদিন অনেকে উদ্ধার লাভ করছিলেন আর যাঁরা উদ্ধার লাভ করছিলেন তাদেরকে প্রভু বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত করতে থাকলেন৷
1 একদিন পিতর ও য়োহন মন্দিরে গেলেন, তখন বেলা প্রায় তিনটে৷ এই সময়েই মন্দিরে রোজ প্রার্থনা হত৷ 2 যখন তাঁরা মন্দির প্রাঙ্গনে যাচ্ছিলেন, সেখানে একটা লোককে দেখা গেল৷ সে জন্ম থেকেই খোঁড়া, চলতে পারত না৷ তার বন্ধুরা প্রতিদিন তাকে মন্দির চত্বরে বয়ে নিয়ে আসত আর মন্দিরের ‘সুন্দর’ নামে য়ে ফটক আছে সেখানে নিয়ে গিয়ে তাকে বসিয়ে রাখত৷ যাঁরা মন্দিরে ঢুকত, সে তাদের কাছে কিছু অর্থ ভিক্ষা চাইত৷ 3 সেদিন এই লোকটা পিতর ও য়োহনকে মন্দিরে ঢুকতে দেখে তাদের কাছ থেকে ভিক্ষা চাইতে লাগল৷ 4 পিতর ও য়োহন সেই খোঁড়া লোকটির দিকে একদৃষ্টে চেয়ে বললেন, ‘আমাদের দিকে তাকাও!’ 5 সেই লোকটা তখন কিছু অর্থ পাবার আশায় তাঁদের দিকে তাকালো৷ 6 কিন্তু পিতর তাকে বললেন, ‘আমার কাছে সোনা বা রূপো নেই, আমার কাছে যা আছে আমি তোমাকে তাই দিচ্ছি৷ নাসরতীয় যীশুর নামে তুমি উঠে দাঁড়াও ও হেঁটে বেড়াও৷’ 7 এই বলে পিতর তার ডান হাত ধরে তাকে তুললেন, সঙ্গে সঙ্গে সে তার পায়ে ও গোড়ালিতে বল পেল, 8 আর লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল ও চলতে লাগল৷ তারপর সে তাদের সঙ্গে মন্দিরের মধ্যে ঢুকে সেখানে হেঁটে লাফিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ 9 লোকেরা দেখল সেই লোকটি হাঁটছে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করছে৷ তারা চিনতে পারল মন্দিরের ‘সুন্দর’ নামে ফটকের সামনে বসে ভিক্ষা করত য়ে লোক, সেই লোকই হেঁটে বেড়াচ্ছে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করছে৷ ঐ লোকটির জীবনে যা ঘটেছে তা দেখে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল, তারা বুঝে উঠতে পারল না এমন বিস্ময়কর ব্যাপার কি করে ঘটল৷ 10 11 লোকটি পিতর ও য়োহনকে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল; তাই সকলেই এই লোকটির সুস্থতা দেখে আশ্চর্য হয়ে শলোমনের বারান্দায় পিতর ও য়োহনের কাছে দৌড়ে এল৷ 12 এই দেখে পিতর জনতার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘হে আমার ইহুদী ভাইয়েরা, আপনারা এতে আশ্চর্য হচ্ছেন কেন? আপনারা আমাদের দিকে এমনভাবে দেখছেন, য়েন আমরা নিজেদের ক্ষমতার গুণে একে চলবার শক্তি দিয়েছি৷ আপনারা কি মনে করেন য়ে আমরা খুব ধার্মিক, তাই এই কাজ করতে পেরেছি? 13 না! ঈশ্বরই একাজ করেছেন৷ তিনি অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, তিনিই তাঁর দাস যীশুকে মহিমান্বিত করেছেন৷ এই যীশুকেই আপনারা মৃত্যুদণ্ডের জন্য শত্রুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন৷ সেদিন পীলাত যখন তাঁকে ছেড়ে দেবেন বলে মনস্থ করেছিলেন, তখন আপনারা তাঁকে অগ্রাহ্য করেছিলেন৷ আপনারা বলেছিলেন, যীশুকে আপনারা চান না৷ 14 আপনারা সেই পবিত্র ও নির্দোষ ব্যক্তিকে অগ্রাহ্য করে তাঁর বদলে একজন খুনীকে আপনাদের জন্য ছেড়ে দিতে বলেছিলেন৷ 15 যিনি জীবনদাতা, আপনারা তাঁকে হত্যা করেছিলেন; কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ আমরা এসবের সাক্ষী৷ 16 এই যীশুর পরাক্রমেই এই খোঁড়াটি সুস্থতা লাভ করেছে৷ এসব ঘটেছে কারণ আমরা যীশুর ক্ষমতায় বিশ্বাস করেছি৷ আপনারা এই লোকটিকে দেখেছেন ও তাকে চেনেন৷ যীশুর উপর নির্ভর করায় সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে; নিজ চক্ষে আপনারা তা দেখেছেন৷’ 17 ‘এখন আমার ভাইয়েরা, আমি জানি য়ে অজ্ঞতা বশতঃই আপনারা এমন কাজ করেছিলেন, আর আপনাদের নেতারাও তাই করেছিলেন৷ 18 কিন্তু ভাববাদীদের মাধ্যমে ঈশ্বর তাঁর খ্রীষ্টের দুঃখভোগের কথা যা জানিয়েছেন, সে সবই তিনি এইভাবে পূর্ণ করেছেন৷ 19 তাই আপনারা মন-ফিরান এবং ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসুন, য়েন আপনাদের পাপ মুছে দেওযা হয়৷ 20 এইভাবে য়েন প্রভুর কাছ থেকে আত্মিক বিশ্রামের সময় আসে; আর তিনি য়েন আপনাদের জন্য আগেই য়ে খ্রীষ্টকে মনোনীত করেছেন সেই যীশুকে পাঠান৷ 21 যতক্ষণ পর্যন্ত না সব কিছু পুনঃস্থাপন হয় যা বহুপূর্বে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের মুখ দিয়ে বলেছেন, ততক্ষণ খ্রীষ্টকে অবশ্যই স্বর্গে থাকতে হবে৷ 22 কারণ মোশি বলেছেন, ‘প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের জন্য তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকে আমার মত এক ভাববাদীকে উত্পন্ন করবেন৷ তিনি তোমাদের যা যা বলবেন, তোমরা তাঁর সকল কথা শুনবে৷ 23 য়ে কেউ তাঁর কথা না শুনবে, সে লোকদের মধ্য থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হবে৷’ 24 হ্যাঁ, সমস্ত ভাববাদী এমনকি শমূয়েল ও তার পরে য়ে সকল ভাববাদী এসেছেন তাঁরা সকলে এই দিনের কথা বলে গেছেন৷ 25 আপনারা তো ভাববাদীদের বংশধর, আপনারা ঈশ্বরের সেই চুক্তির উত্তরাধিকারী, য়ে চুক্তি ঈশ্বর আপনাদের পিতৃপুরুষের সাথে করেছিলেন৷ তিনি তো অব্রাহামকে বলেছিলেন, ‘তোমার বংশ দ্বারা পৃথিবীর সকল জাতিই আশীর্বাদ লাভ করবে৷’ 26 ঈশ্বর তাঁর দাসকে পুনরুত্থিত করে প্রথমে তাঁকে আপনাদের কাছেই পাঠাবেন, য়েন আপনাদের প্রত্যেককে মন্দ থেকে ফিরিয়ে এনে আশীর্বাদ করতে পারেন৷ 27 28 29 30 31
1 পিতর ও য়োহন যখন লোকদের সাথে কথা বলছিলেন, তখন মন্দির থেকে ইহুদী যাজকরা, মন্দিরের রক্ষীবাহিনীর সেনাপতি ও সদ্দূকীরা তাঁদের কাছে এসে হাজির হল৷ 2 পিতর ও য়োহন লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন ও মৃতদের মধ্য থেকে যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে লোকদের কাছে বলছিলেন বলে ঐ লোকেরা বিরক্ত হয়েছিল৷ 3 তারা পিতর ও য়োহনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল ও পরের দিন পর্যন্ত তাদের কারাগারে রাখল; কারণ তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল৷ 4 কিন্তু অনেকে যাঁরা পিতর ও য়োহনের মুখ থেকে সেই শিক্ষা শুনেছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই যীশুর উপর বিশ্বাস করল৷ যাঁরা বিশ্বাস করল, সেই বিশ্বাসীদের মধ্যে পুরুষ মানুষই ছিল প্রায় পাঁচ হাজার৷ 5 পরের দিন তাদের ইহুদী নেতারা, সমাজপতি ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সকলে জেরুশালেমে জড়ো হলেন৷ 6 সেখানে হানন মহাযাজক, কাযাফা, য়োহন, আলেকসান্দার ও মহাযাজকের পরিবারের সব লোক ছিলেন৷ 7 পিতর ও য়োহনকে তাদের সামনে দাঁড় করিয়ে ইহুদী নেতারা প্রশ্ন করলেন, ‘তোমরা কোন্ শক্তিতে বা অধিকারে এসব কাজ করছ?’ 8 তখন পিতর পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাঁদের বললেন, ‘মাননীয় জন-নেতৃবৃন্দ ও সমাজপতিরা: 9 একজন খোঁড়া লোকের উপকার করার জন্য যদি আজ আমাদের প্রশ্ন করা হয় য়ে সে কিভাবে সুস্থ হল, 10 তাহলে আপনারা সকলে ও ইস্রায়েলের সকল লোক একথা জানুক, য়ে এটা সেই নাসরতীয় যীশু খ্রীষ্টের শক্তিতে হল! যাকে আপনারা ক্রুশে বিদ্ধ করে হত্যা করেছিলেন, ঈশ্বর তাকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ হ্যাঁ, তাঁরই মাধ্যমে এই লোক আজ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ 11 যীশু হলেন‘সেই পাথর যাকে রাজমিস্ত্রিরা অর্থাত্ আপনারা অগ্রাহ্য় করে সরিয়ে দিয়েছিলেন৷ তিনিই এখন কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠেছেন৷’ গীতসংহিতা 118:22 12 যীশুই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি মানুষকে উদ্ধার করতে পারেন৷ জগতে তাঁর নামই একমাত্র শক্তি যা মানুষকে উদ্ধার করতে পারে৷’ 13 পিতর ও য়োহনের নির্ভীকতা দেখে ও তাঁরা য়ে লেখাপড়া না জানা সাধারণ মানুষ তা বুঝতে পেরে পর্ষদ আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তখন তারা বুঝতে পারল য়ে পিতর ও য়োহন যীশুর সঙ্গে ছিলেন৷ 14 য়ে লোকটি সুস্থ হয়েছিল, সে পিতর ও য়োহনের সঙ্গে আছে দেখে পর্ষদ কিছুই বলতে পারল না৷ 15 তারা পিতর ও য়োহনকে সভাকক্ষ থেকে বাইরে য়েতে বলল৷ তাঁরা বাইরে গেলে নেতৃবর্গ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, 16 ‘এই লোকদের নিয়ে কি করা যায়? কারণ এটা ঠিক য়ে ওরা য়ে উল্লেখয়োগ্য অলৌকিক কাজ করেছে তা জেরুশালেমের সকল লোক জেনে গেছে; আর আমরাও একথা অস্বীকার করতে পারি না৷ 17 কিন্তু একথা য়েন লোকদের মধ্যে আর না ছড়ায়, তাই এস আমরা এদের ভয় দেখিয়ে সাবধান করে দিই, য়েন এই লোকের নামের বিষয় উল্লেখ করে তারা কোন কথা না বলে৷’ 18 তাই তারা পিতর ও য়োহনকে আবার ভেতরে ডাকল; আর যীশুর নামে কোন কিছু বলতে বা শিক্ষা দিতে নিষেধ করল৷ 19 কিন্তু পিতর ও য়োহন এর উত্তরে তাদের বললেন, ‘আপনারাই বিচার করুন, ঈশ্বরের বাক্যকে অমান্য করা বা আপনাদের বাধ্য থাকা কোনটি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সঠিক হবে? 20 কারণ আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি তা না বলে থাকতে পারব না৷’ 21 এরপর তারা পিতর ও য়োহনকে আরো কিছুক্ষণ শাসিয়ে ছেড়ে দিল৷ তারা ওদের শাস্তি দেবার মতো কোন কিছুই পেল না, কারণ যা ঘটেছিল তা দেখে সব লোক ঈশ্বরের প্রশংসা করছিল৷ আর য়ে লোকটির ওপর আরোগ্যদানের এই অলৌকিক কাজ হয়েছিল, তার বয়স চল্লিশের ওপর ছিল৷ 22 23 পিতর ও য়োহন ছাড়া পেয়ে নিজের লোকদের কাছে ফিরে গেলেন; আর প্রধান যাজকগণ ও ইহুদী নেতারা তাদের যা যা বলেছিলেন, সে সব কথা তাঁদের বললেন৷ 24 একথা শুনে বিশ্বাসীরা সকলে সমবেত কণ্ঠে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে এই প্রার্থনা জানাল, ‘প্রভু, আকাশমণ্ডল, পৃথিবী, সমুদ্র আর এসবের মধ্যে যা কিছু আছে সে সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, তুমিই৷ 25 তুমি তোমার দাস আমাদের পিতৃপুরুষ দাযূদের মুখ দিয়ে পবিত্র আত্মার দ্বারা বলেছ:‘জাতিবৃন্দ কেন ক্রুদ্ধ হল? কেনই বা লোকেরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অসার পরিকল্পনা করল? 26 জগতের রাজারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হল, আর শাসকেরা প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ও তাঁর খ্রীষ্টের বিরুদ্ধে এক হল৷’গীতসংহিতা 2:1-2 27 হ্যাঁ, এই শহরেই তোমার পবিত্র দাস যীশুর বিরুদ্ধে, যাকে তুমি অভিষিক্ত করেছ তাঁর বিরুদ্ধে হেরোদ, পন্তীয়, পীলাত, ইহুদীরা ও অইহুদীরা এক হয়েছিল৷ 28 তোমার শক্তিতে ও তোমার ইচ্ছায় পূর্বেই যা ঘটবে বলে তুমি ঠিক করেছিলে, সেই কাজ করতেই তারা একত্র হয়েছিল৷ 29 আর এখন, হে প্রভু, তাদের এই শাসানি তুমি শোন৷ প্রভু আমরা তোমার দাস; তোমার এই দাসদের সাহসের সঙ্গে তোমার কথা বলবার ক্ষমতা দাও৷ 30 লোককে সুস্থতা দেবার জন্য তোমার হাত তুমি বাড়িয়ে দাও; তোমার পবিত্র দাস যীশুর নামে য়েন অলৌকিক ও আশ্চর্য সব কাজ সম্পন্ন হয়৷’ 31 সেই বিশ্বাসীরা প্রার্থনা শেষ করলে, তাঁরা য়েখানে একত্রিত হয়েছিলেন সেই জায়গা কেঁপে উঠল৷ তাঁরা সকলে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হলেন আর অসীম সাহসে ঈশ্বরের কথা বলতে লাগলেন৷ 32 বিশ্বাসীদের সকলের হৃদয় ও মন এক ছিল৷ একজনও নিজের সম্পত্তির কোন কিছুই নিজের বলে মনে করতেন না, কিন্তু তাঁদের সকল জিনিস তাঁরা পরস্পর ভাগ করে দিতেন৷ 33 প্রেরিতের মহাশক্তিতে মৃতদের মধ্য থেকে প্রভু যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে সাক্ষ্য দিতেন; আর তাঁদের সকলের ওপর মহাআশীর্বাদ ছিল৷ 34 তাঁদের দলের মধ্যে কারোর কোন কিছুর অভাব ছিল না, কারণ যাদেব জমি-জমা বা বাড়ি ছিল তাঁরা তা বিক্রি করে সেই সম্পত্তির মূল্য নিয়ে এসে প্রেরিতদের দিতেন৷ 35 পরে যার য়েমন প্রযোজন, প্রেরিতরা তাকে তেমনি দিতেন৷ 36 বিশ্বাসীবর্গের একজনের নাম ছিল য়োষেফ; প্রেরিতেরা তাঁকে বার্ণবা বলে ডাকতেন; এই নামের অর্থ ‘উত্সাহদাতা’৷ ইনি ছিলেন লেবীয়, কুপ্রীয়ে তাঁর জন্ম হয়৷ 37 য়োষেফের একটি জমি ছিল, তিনি তা বিক্রি করে সেই টাকা নিয়ে এসে প্রেরিতদের কাছে দিলেন৷
1 অননিয় নামে একজন লোক ছিল, তার স্ত্রীর নাম সাফীরা৷ অননিয় তার একটি জমি বিক্রি করে 2 সেই টাকার কিছু অংশ প্রেরিতদের কাছে জমা দিল; কিন্তু গোপনে টাকার কিছু অংশ নিজের কাছে রাখল৷ তার স্ত্রী এবিষয় জানত ও একমত ছিল৷ 3 তখন পিতর বললেন, ‘অননিয় তুমি কেন শয়তানকে তোমার অন্তরে কাজ করতে দিলে? তুমি পবিত্র আত্মার কাছে কেন মিথ্যা বললে ও জমি বিক্রির টাকা থেকে কিছুটা নিজেদের জন্য রেখে দিলে? 4 সেই জমি বিক্রি করার আগে কি তা তোমারই ছিল না? আর তা বিক্রি করার পর সেই টাকা কি তোমার অধিকারেই ছিল না? তোমরা এই ধারণা কোথা থেকে পেলে? মানুষের কাছে নয় কিন্তু তুমি ঈশ্বরের কাছে মিথ্যা বললে৷’ 5 এই কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে অননিয় মাটিতে পড়ে মারা গেল; আর যাঁরা একথা শুনল, তারা সকলে অত্যন্ত ভয় পেয়ে গেল৷ পরে যুবকেরা উঠে তাকে কাপড়ে জড়িয়ে বাইরে নিয়ে গিয়ে কবর দিল৷ 6 7 এই ঘটনার পর প্রায় তিন ঘন্টা কেটে গেল, এমন সময় অননিয়ের স্ত্রী সাফীরা সেখানে এল, তার স্বামীর কি হয়েছে সে তার কিছুই জানত না৷ 8 পিতর তাকে বললেন, ‘আমায় বলতো তোমার সেই জমি কি এত টাকায় বিক্রি করেছিলে?’সে বলল, ‘হ্যাঁ, ঐ টাকায় বিক্রি করেছি৷’ 9 তখন পিতর তাকে বললেন, ‘তোমরা দুজনে প্রভুর আত্মাকে পরীক্ষা করার জন্য কেন একচিত্ত হলে? শোন! যাঁরা তোমার স্বামীকে কবর দিতে গিয়েছিল, তারা দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে; তারা তোমাকেও নিয়ে যাবে৷’ 10 সঙ্গে সঙ্গে সেও তার পায়ের কাছে পড়ে মারা গেল৷ ঐ যুবকেরা ভেতরে এসে তাকে মৃত দেখল এবং বাইরে নিয়ে গিয়ে তার স্বামীর পাশে তাকে কবর দিল৷ 11 তখন সমস্ত মণ্ডলী ও যাঁরা তা শুনল, তাদের সকলের মধ্যে মহাভয়ের সঞ্চার হল৷ 12 প্রেরিতদের মাধ্যমে লোকদের মধ্যে নানান অলৌকিক কাজ হতে লাগল৷ প্রেরিতেরা শলোমনের বারান্দায় একত্রিত হতেন৷ তাঁদের সকলের উদ্দেশ্য একই ছিল৷ 13 অন্যেরা তাদের সঙ্গে য়োগ দিতে সাহস করত না; কিন্তু সকলে তাদের প্রশংসা করত৷ 14 আর দলে দলে অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক যীশুতে বিশ্বাসী হয়ে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকল৷ 15 লোকেরা, এমন কি তাদের অসুস্থ রোগীদের নিয়ে এসে রাস্তার মাঝে তাদের বিছানায় বা খাটিযাতে শুইয়ে রাখত, য়েন পিতর যখন সেখান দিয়ে যাবেন তখন অন্ততঃ তাঁর ছাযাও তাদের উপর পড়ে; আর তাতেই তারা সুস্থ হয়ে য়েত৷ 16 জেরুশালেমের চারপাশের বিভিন্ন নগর থেকে অনেক লোক অসুস্থ ও অশুচি আত্মায় ভর করা লোকদের নিয়ে এসে ভীড় করত; আর তারা সকলেই সুস্থ হত৷ 17 এরপর মহাযাজক এবং তাঁর সঙ্গীরা অর্থাত্ সদ্দূকী দলের লোকেরা ঈর্ষায় জ্বলে উঠল৷ 18 তারা প্রেরিতদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে আটকে দিল; 19 কিন্তু রাতের বেলায় প্রভুর এক দূত সেই কারাগারের দরজা খুলে দিলেন৷ তিনি তাদের পথ দেখিয়ে কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে বললেন, 20 ‘যাও মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে তোমরা লোকদের এই নতুন জীবনের সকল বার্তা শোনাও৷’ 21 প্রেরিতেরা আজ্ঞা অনুসারে ভোর বেলায় মন্দিরে গিয়ে শিক্ষা প্রচার করতে লাগলেন৷এদিকে মহাযাজক ও তার সঙ্গীরা, ইহুদী সমাজের গন্যমান্য লোকদের এক মহাসভা ডাকল; আর প্রেরিতদের সেখানে নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালো৷ 22 কিন্তু সেই লোকেরা কারাগারে এসে কারাগারের মধ্যে প্রেরিতদের দেখতে পেল না৷ তাই তারা ফিরে গিয়ে বলল, 23 ‘আমরা দেখলাম কারাগারের তালা বেশ ভালভাবেই বন্ধ আছে, দরজায় দরজায় পাহারাদাররা দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে আমরা কাউকে দেখতে পেলাম না, দেখলাম কারাগার খালি পড়ে আছে৷’ 24 মন্দির রক্ষীবাহিনীর প্রধান ও প্রধান যাজকেরা এই কথা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে ভাবতে লাগল, ‘এর পরিণতি কি হবে?’ 25 সেই সময় একজন এসে তাদের বলল, ‘শুনুন! য়ে লোকদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, দেখলাম তাঁরা মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছেন৷’ 26 তখন রক্ষীবাহিনীর প্রধান তার লোকদের নিয়ে সেখানে গেল ও প্রেরিতদের নিয়ে এল৷ তারা কোনরকম জোর করল না, কারণ তারা লোকদের ভয় করতে লাগল, পাছে তারা পাথর ছুঁড়ে তাদের মেরে ফেলে৷ 27 তারা প্রেরিতদের নিয়ে এসে ইহুদী নেতাদের সামনে দাঁড় করালে মহাযাজক প্রেরিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেন৷ 28 তিনি বললেন, ‘ঐ মানুষটির বিষয়ে কোন শিক্ষা দিতে আমরা তোমাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করেছিলাম৷ ভেবে দেখ তোমরা কি করেছ? তোমরা তোমাদের শিক্ষায় জেরুশালেম মাতিয়ে তুলেছ, আর সেই লোকের মৃত্যুর জন্য সব দোষ আমাদের ওপর চাপাতে চাইছ৷’ 29 তখন পিতর ও অন্য প্রেরিতেরা এর উত্তরে বললেন, ‘মানুষের হুকুম মানার চেয়ে বরং ঈশ্বরের আদেশ আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে৷ 30 আপনারা যীশুকে হত্যা করেছিলেন, তাঁকে বিদ্ধ করে ক্রুশে টাঙ্গিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ 31 সেই যীশুকে ঈশ্বর নেতা ও ত্রাণকর্তারূপে উন্নত করে নিজের ডান দিকে স্থাপন করেছেন, যাতে ইহুদীরা তাদের মন ফিরায় ও তিনি তাদের পাপের ক্ষমা দিতে পারেন৷ 32 আর আমরা এসব ঘটতে দেখেছি, বলতে পারি য়ে এসব সত্য৷ পবিত্র আত্মাও দেখাচ্ছেন য়ে এসব সত্য৷ যাঁরা তাঁর বাধ্য তাদের তিনি পবিত্র আত্মা দান করেছেন৷’ 33 মহাসভার সভ্যরা এসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে উঠল, আর তারা প্রেরিতদের হত্যা করতে চাইল৷ 34 কিন্তু সেই মহাসভার একজন সভ্য, গমলীয়েল ইনি ব্যবস্থার শিক্ষক, যাকে সকলে মান্য করত, তিনি উঠে দাঁড়িয়ে ঐ প্রেরিতদের কিছু সময়ের জন্য সভা থেকে বাইরে নিয়ে য়েতে বললেন৷ 35 পরে তিনি তাদের বললেন, ‘হে ইস্রায়েলীরা, এই লোকদের নিয়ে তোমরা যা করতে যাচ্ছ সে বিষয়ে সাবধান৷ 36 কারণ এর কিছু আগে থুদা নামে একজন লোক নিজেকে মহান বলে দাবী করেছিল৷ প্রায় চারশো লোক তার অনুসারী হয়েছিল; আর সে নিহত হলে তার অনুগামীরা সব য়ে যার পালিয়ে গেল, তার কোন চিহ্নই রইল না৷ 37 থুদার পরে আদমসুমারীর সময় গালীলীয় যিহূদার উদয় হয়, সেও বেশ কিছু লোককে তার দলে টানে; পরে সেও নিহত হয়, আর তার অনুগামীরাও ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়৷ 38 তাই বর্তমানে এই অবস্থা দেখে আমি তোমাদের বলছি: এই লোকেদের থেকে দূরে থাক, তাদের ছেড়ে দাও, কারণ তাদের এই পরিকল্পনা অথবা এই কাজ যদি মানুষের থেকে হয় তবে তা ব্যর্থ হবে৷ 39 কিন্তু যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে তোমরা তা বন্ধ করতে পারবে না৷ হয়তো দেখবে য়ে তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছ৷’ তখন তারা এই পরামর্শ গ্রহণ করল৷ 40 তারা প্রেরিতদের ভেতরে ডেকে এনে চাবুক মারল, যীশুর নামে একটি কথাও বলতে নিষেধ করে তাদের ছেড়ে দিল৷ 41 প্রেরিতেরা মহাসভার সভাস্থল থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন, আর যীশুর নামের জন্য তাঁরা য়ে নির্য়াতন ও অপমান সহ্য করার য়োগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন, এই কথা ভেবে আনন্দ করতে লাগলেন৷ 42 এবং দমে না গিয়ে প্রতিদিন মন্দিরের মধ্যে ও বিভিন্ন বাড়িতে যীশুর বিষয়ে শিক্ষা ও সুসমাচারের প্রচার করে দেখালেন য়ে যীশুই হলেন খ্রীষ্ট৷
1 বহুলোক দলে দলে খ্রীষ্টের অনুগামী হতে লাগল৷ সেই সময় গ্রীক ভাষাভাষী বিশ্বাসীরা অপর ইহুদী বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল, য়ে দৈনিক প্রযোজনীয় সামগ্রী বিতরণের সময়ে তাদের বিধবাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে৷ 2 তখন সেই বারোজন প্রেরিত সমস্ত অনুগামীদের ডেকে বললেন, ‘লোকদের খাদ্য পরিবেশন করার জন্যে ঈশ্বরের বাক্য প্রচারের কাজ বন্ধ করা ঠিক নয়৷ 3 তাই আমার ভাইয়েরা, তোমরা নিজেদের মধ্য থেকে সাতজন বিজ্ঞ, পবিত্র আত্মায় পূর্ণ ও সুনাম সম্পন্ন লোককে বেছে নাও৷ আমরা তাদের ওপর এই কাজের ভার দেব৷ 4 এর ফলে আমরা প্রার্থনা ও ঈশ্বরের বাক্য প্রচারের কাজে আরো বেশী সময় দিতে পারব৷’ 5 তাদের এই প্রস্তাব সকল বিশ্বাসীকে খুশী করল, তাই তারা এদের মনোনীত করলেন; স্তিফান ইনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী ও পবিত্র আত্মায় পূর্ণ ছিলেন৷ ফিলিপ, প্রখর, নীকানর, তীমোন, পার্মিনা ও নিকলায় ইনি ছিলেন আন্তিয়খিযার লোক, যিনি ইহুদী ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন৷ 6 তারা এদের সকলকে প্রেরিতদের সামনে হাজির করল; আর প্রেরিতেরা প্রার্থনা করে তাঁদের ওপর হাত রাখলেন৷ 7 ঈশ্বরের বাক্যের বহুল প্রচার হল, ফলে জেরুশালেমে অনুগামীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকল, এমনকি যাজক সম্প্রদায়ের মধ্যেও একটা বড় দল খ্রীষ্টে বিশ্বাস করে আনুগত্য স্বীকার করল৷ 8 স্তিফান ঈশ্বরের শক্তি ও অনুগ্রহে পরিপূর্ণ ছিলেন; তিনি জনসাধারণের মধ্যে নানান অলৌকিক ও পরাক্রম কাজ করতে লাগলেন৷ 9 কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে কিছু লোক এসে স্তিফানেব সঙ্গে তর্ক শুরু করল৷ তাদের মধ্যে কেউ কেউ সমাজ-গৃহ থেকে এসেছিল যাদের নাম ছিল লিবর্ত্তীনদের সমাজ-গৃহ, আলেকসান্দ্রীয় ও কুরীনীয় কিছু ইহুদীরা এই সমাজ-গৃহে য়েত৷ অন্য ইহুদীরা কিলিকিযা ও এশিযা থেকে এসেছিল৷ 10 তাদের সঙ্গে বিজ্ঞতায় কথা বলতে পবিত্র আত্মা স্তিফানকে সাহায্য করেছিলেন৷ তাঁর কথা এতো শক্তিশালী ছিল য়ে তারা কেউ তাঁর সামনে দাঁড়াতে পারল না৷ 11 তখন তারা কয়েকজন লোককে ঘুষ দিয়ে মিথ্যে বলাল; যাঁরা বলল, ‘আমরা শুনেছি য়ে স্তিফান মোশি ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নিন্দা করছে৷’ 12 এইভাবে তারা জনসাধারণ, ইহুদী নেতাদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের উত্তেজিত করে তুলত৷ তারা এসে স্তিফানকে ধরে নিয়ে মহাসভার সামনে হাজির করল৷ 13 এরপর তারা মিথ্যা সাক্ষী দাঁড় করাল, যাঁরা বলল, ‘এই লোক পবিত্র মন্দিরের বিরুদ্ধে ও বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলতে কখনও নিবৃত্ত হয় না৷ 14 আমরা একে বলতে শুনেছি য়ে এই নাসরতীয় যীশু এই স্থান ধ্বংস করবে আর মোশির দেওযা প্রথা বদলে দেবে৷’ 15 তখন মহাসভায় যাঁরা বসেছিল তারা সকলে স্তিফানের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে দেখল, স্তিফানের মুখ স্বর্গদূতের মুখের মত উজ্জ্বল৷ 16 17 18 19 20 21 22 23
1 এরপর যাজক স্তিফানকে বললেন, ‘এসব কথা কি সত্যি?’ 2 এর উত্তরে স্তিফান বললেন, ‘ভাইয়েরা ও এই জাতির পিতাগণ, আমার কথা শুনুন৷ আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম হারণে বসবাস করার আগে য়ে সময় মিসপতামিযাতে ছিলেন, সেই সময় মহিমার ঈশ্বর তাঁর সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন৷ 3 আর তাঁকে বলেছিলেন, ‘তুমি তোমার স্বদেশ ও স্বজনের মধ্য থেকে চলে এস, আর আমি য়ে দেশ দেখাব সেই দেশে যাও৷’ 4 অব্রাহাম তখন কলদীয়ের দেশ ছেড়ে হারণে এসে বসবাস করেন৷ তাঁর বাবার মৃত্যুর পর ঈশ্বর তাঁকে সেখান থেকে এই দেশে আনলেন, য়ে দেশে এখন আপনারা বাস করছেন৷ 5 এখানে ঈশ্বর তাঁকে কোন ভূসম্পত্তি দিলেন না, এমন কি এক ছটাক জমিও না; কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিলেন য়ে শেষ পর্যন্ত এই দেশটা তাঁকে ও তাঁর বংশধরদের দেবেন৷ যদিও অব্রাহামের তখনও কোন সন্তান ছিল না৷ 6 ঈশ্বর তাঁকে এই কথা বললেন, ‘তোমার বংশধরেরা বিদেশে প্রবাসী জীবন কাটাবে, তারা দাসত্ব-শৃঙ্খলে বদ্ধ হবে, আর সে দেশের লোকেরা তাদের প্রতি চারশো বছর ধরে অত্যাচার করবে৷ 7 তারা য়ে জাতির দাসত্ব করবে, আমি তাদের দণ্ড দেব৷’ঈশ্বর আরো বললেন, ‘এরপর তারা সেই দেশ থেকে বেরিয়ে এসে এখানে আমার উপাসনা করবে৷’ 8 এরপর অব্রাহামের সঙ্গে ঈশ্বর এক চুক্তি করলেন৷ এই চুক্তির চিহ্ন হল সুন্নত সংস্কার৷ এরপর অব্রাহামের একটি পুত্র সন্তান হল৷ আট দিনের দিন তিনি তার সুন্নত করালেন; সেই পুত্রের নাম ইসহাক৷ ইসহাকের পুত্র যাকোবেরও তারা সুন্নত করলেন৷ যাকোবের পুত্ররা বারোজন গোষ্ঠীর পিতা হলেন৷ 9 ‘তাদের সেই পিতাগণ য়োষেফের প্রতি ঈর্ষান্বিত হলেন৷ য়োষেফকে দাস ব্যবসাযীদের কাছে বিক্রি করা হলে তাকে মিশরে নিয়ে আসা হল, কিন্তু ঈশ্বর তাঁর সহবর্তী ছিলেন৷ 10 য়োষেফ সেখানে অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন; কিন্তু ঈশ্বর তাকে তাঁর সমস্ত কষ্টের হাত থেকে উদ্ধার করলেন৷ ফরৌণ তখন মিশরের রাজা, য়োষেফের মধ্যে ঈশ্বরদত্ত বিজ্ঞতা দেখতে পেয়ে ফরৌণ তাঁকে পছন্দ করলেন৷ ফরৌণ য়োষেফকে মিশরের অধ্যক্ষরূপে নিযুক্ত করলেন, এমনকি ফরৌণের গৃহের সমস্ত পরিজনের উপরে তাকে কর্তা করলেন৷ 11 এরপর সারা মিশরে ও কনান দেশে প্রচণ্ড খরা হল৷ এমন খরা যাতে কোন ফসল উত্পন্ন হল না, এতে লোকেরা মহাকষ্টে পড়ল৷ আমাদের পিতৃপুরুষদের খাদ্যবস্তুর অভাব হল৷ 12 কিন্তু যাকোব শুনতে পেলেন য়ে মিশরে শস্য মজুত আছে, তখন তিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের মিশরে পাঠালেন৷ 13 তাঁদের সেই ছিল প্রথমবার মিশরে যাওযা৷ তাঁরা যখন দ্বিতীয়বার সেখানে গেলেন, তখন য়োষেফ নিজে থেকে তাঁর ভাইদের কাছে আত্মপরিচয় দিলেন৷ য়োষেফের পরে পরিজনদের সংবাদ ফরৌণ শুনতে পেলেন৷ 14 পরে কিছু লোক পাঠিয়ে য়োষেফ তাঁর পিতা যাকোব ও তাঁর সব আত্মীয় পরিজনদের ডেকে পাঠালেন, তাঁরা মোট পঁচাত্তর জন ছিলেন৷ 15 এইভাবে যাকোব মিশরে গেলেন, পরে তাঁর ও আমাদের পিতৃপুরুষদের সেখানে মৃত্যু হল৷ 16 তাঁদের মৃতদেহ শিখিমে নিয়ে যাওযা হয়েছিল, আর সেখানে তাঁদেরকে কবরে রাখা হয়৷ এই কবরস্থান অব্রাহাম শিখিম শহরে হমোরের ছেলেদের কাছ থেকে কিছু টাকা দিয়ে কিনেছিলেন৷ 17 ‘মিশরে ইহুদীরা বৃদ্ধি পেয়ে বহুসংখ্যক হয়ে উঠল৷ ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পূর্ণ হওযার সময় হল৷ 18 মিশরে তখন অন্য একজন রাজা হয়েছেন৷ তিনি য়োষেফের সম্পর্কে জানতেন না৷ 19 এই রাজা আমাদের লোকদের সঙ্গে চাতুরী করলেন৷ তিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি দুর্য়্ববহার করতে লাগলেন৷ তাদের নবজাত শিশুদের জোর করে বাইরে ফেলে দিতে হুকুম দিলেন, য়েন তারা মারা যায়৷ 20 সেই সময় মোশির জন্ম হয়, তিনি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সুন্দর ছিলেন, তিন মাস পর্যন্ত তিনি তাঁর পিতার গৃহেই লালিত-পালিত হন৷ 21 পরে তাঁকে বাইরে রেখে দেওযা হলে ফরৌণের কন্যা তাঁকে কুড়িয়ে এনে তাঁর নিজের ছেলের মত মানুষ করেন৷ 22 মোশি মিশরীয়দের সমস্ত জ্ঞানে শিক্ষিত হয়ে উঠলেন, আর কথায় ও কাজে মহাক্ষমতাশালী হয়ে উঠলেন৷ 23 ‘মোশির বয়স যখন চল্লিশ বছর তখন তাঁর ইস্রায়েলী ভাইদের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা হল৷ 24 মোশি দেখলেন য়ে একজন মিশরীয় একজন ইস্রায়েলীয়র প্রতি দুর্য়্ববহার করছে, তিনি তখন ইস্রায়েলী লোকটির পক্ষ সমর্থন করলেন৷ ইস্রায়েলী লোকটিকে আঘাত করার জন্য মোশি সেই মিশরীয়কে শাস্তি দিলেন এবং তাকে এমন মার দিলেন য়ে সে মরেই গেল৷ 25 তিনি মনে করলেন য়ে তাঁর স্বজাতীয় ভাইরা হয়তো বুঝবে য়ে তাদের উদ্ধার করতে ঈশ্বরই তাকে পাঠিয়েছেন, কিন্তু তারা তা বুঝল না৷ 26 পরদিন, দুজন ইস্রায়েলী যখন নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে, সেই সময় তিনি তাদের কাছে এসে তাদের মধ্যে মিলন করে দেবার জন্য বললেন, ‘দেখ, তোমরা পরস্পর ভাই৷ তবে কেন একে অপরের প্রতি দুর্য়্ববহার করছ?’ 27 কিন্তু অন্যায়কারী লোকটি মোশিকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে বলল, ‘আমাদের বিচার করতে কে তোমাকে অধিকার দিয়েছে? 28 গতকাল তুমি য়েমন সেই মিশরীয়কে খুন করেছিলে, তেমনি কি আমাকেও খুন করতে চাও?’ 29 একথা শুনে মোশি মিশর থেকে পালিয়ে গেলেন; আর মিদিয়নে বিদেশীরূপে বাস করতে লাগলেন৷ সেখানে তিনি অপরিচিত আগন্তুকের মতো ছিলেন৷ সেখানে থাকার সময় মোশির দুই ছেলের জন্ম হয়৷ 30 ‘এর চল্লিশ বছর পরে তিনি যখন সীনয় পর্বতের কাছে মরুপ্রান্তরে ছিলেন, সেখানে এক জ্বলন্ত ঝোপের আগুনের শিখার মধ্যে এক স্বর্গদূত তাঁকে দেখা দিলেন৷ 31 এই দেখে মোশি আশ্চর্য হয়ে আরো ভাল করে দেখবার জন্য যখন কাছে গেলেন, তখন প্রভুর এই রব শুনলেন, 32 ‘আমি তোমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের ঈশ্বর৷’মোশি ভয়ে কাঁপতে লাগলেন, ভালভাবে তাকাতেও সাহস করলেন না৷ 33 এরপর প্রভু তাঁকে বললেন, ‘তোমার পা থেকে চটি (জুতো) খুলে ফেল, কারণ য়েখানে তুমি দাঁড়িয়ে আছ, সেই জায়গা পবিত্র৷ 34 মিশরে আমি আমার লোকদের দুরবস্থা ভাল করেই দেখেছি, তাদের আর্তনাদ শুনেছি, তাই আমি তাদের উদ্ধার করার জন্য নেমে এসেছি৷ মোশি, তুমি এস, এখন আমি তোমাকে মিশরে পাঠাব৷’ 35 ‘এই মোশিকেই ইস্রায়েলীয়রা চায় নি বলে বলেছিল, ‘কে তোমাকে আমাদের শাসক ও বিচারক বানিয়েছে?’ মোশিই সেই ব্যক্তি যাকে ঈশ্বর স্বর্গদূতের মাধ্যমে শাসনকর্তা ও ত্রাণকর্তারূপে পাঠিয়েছিলেন৷ সেই স্বর্গদূতকেই মোশি জ্বলন্ত ঝোপের মধ্যে রেখেছিলেন৷ 36 এরপর মোশি লোকদের মিশর থেকে বের করে আনলেন৷ তিনি মিশরে, লোহিত সাগরে আর প্রান্তরে চল্লিশ বছর ধরে বহু অলৌকিক ও পরাক্রমের কাজ করেন৷ 37 মোশিই তাঁর ইহুদী ভাইদের বলেছিলেন, ‘ঈশ্বর তোমাদের মধ্য থেকে এক ভাববাদী ঠিক করবেন, তিনি হবেন আমারই মতো৷’ 38 এই মোশিই প্রান্তরে ইহুদীদের সমাবেশে ছিলেন৷ য়ে স্বর্গদূত সীনয় পর্বতে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তিনি তাঁর সঙ্গে ও আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন৷ মোশি ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবনদাযী আদেশ লাভ করে তাঁর আজ্ঞা সকল আমাদের দিয়েছিলেন৷ 39 ‘কিন্তু আমাদের পিতৃপুরুষেরা তাঁর কথা পালন করতে চান নি, তার পরিবর্তে তাঁরা তাঁকে অগ্রাহ্য় করে মিশরে ফিরে য়েতে চেয়েছিলেন৷ 40 আমাদের পিতৃপুরুষরা হারোণকে বললেন, ‘মোশি আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন, কিন্তু তার কি হল আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না৷ তাই কিছু দেবতাদের গড়ে তোল, যাঁরা আমাদেব আগে আগে যাবে ও পরিচালিত করবে৷’ 41 তাই লোকেরা বাছুরের এক প্রতিমা গড়ল আর সেই প্রতিমার সামনে বলিদান উত্সর্গ করল৷ তারা তাদের হাতে গড়া সেই দেবতাকে নিয়ে আনন্দ করতে লাগল৷ 42 কিন্তু ঈশ্বর তাদের প্রতি বিমুখ হলেন, তিনি তাদের আকাশের সেনা অর্থাত্ অলীক দেবতাদের পূজায় বাধা দিলেন না৷ ভাববাদীদের পুস্তকে একথা লেখা আছে:‘হে ইস্রায়েলের গোষ্ঠী, প্রান্তরে চল্লিশ বছর ধরে তোমরা তো আমার উদ্দেশ্যে পশুবলি ও নৈবেদ্য উত্সর্গ কর নি; 43 তোমরা মোলক দেবতার পূজার তাঁবু, রিফান দেবতার নক্ষত্রের প্রতিমূর্তি বহন করেছিলে৷ পূজা করবার জন্যই তোমরা ঐসব দেবতার মূর্তি গড়েছিলে৷ তাই আমি তোমাদের বাবিলের ওপারে নির্বাসনে পাঠাব৷’ আমোষ 5:25-27 44 ‘মরু এলাকায় আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের কাছেই সেই সাক্ষ্য তাঁবু ছিল৷ এই পবিত্র তাঁবু তৈরী হয়েছিল সেই ধারায়, য়েভাবে নমুনা দেখিয়ে ঈশ্বর মোশিকে তা করতে বলেছিলেন৷ 45 পরবর্তীকালে যিহোশূয় আমাদের পিতৃপুরুষদের পরিচালিত করলে তাঁরা ভিন্ন জাতির দেশ দখল করলেন৷ আমাদের লোকেরা সেই দেশে প্রবেশ করলে ঈশ্বর সেখানকার লোকদের সেই দেশ ছেড়ে চলে য়েতে বাধ্য করলেন৷ আমাদের লোকেরা এই নতুন দেশে গেলে ঐ তাঁবুও সঙ্গে নিয়ে এলেন৷ পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে তাঁরা এই তাঁবু পেয়েছিলেন৷ সেই তাঁবু রাজা দাযূদের সময় পর্যন্ত তাঁদের কাছে ছিল৷ 46 দাযূদ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করলেন আর যাকোবের ঈশ্বরের জন্য এক গৃহ নির্মাণ করার অনুমতি চাইলেন৷ 47 কিন্তু দাযূদের ছেলে শলোমন তাঁর জন্য মন্দির নির্মাণ করলেন৷ 48 ‘কিন্তু যিনি পরমেশ্বর তিনি কখনও মানুষের হাতে তৈরী গৃহে বাস করেন না৷ এ বিষয়ে ভাববাদী বলেছেন:‘প্রভু বলেন, 49 স্বর্গ আমার সিংহাসন৷ পৃথিবী আমার পা রাখার জায়গা৷ তুমি আমার জন্য কিরূপ গৃহ নির্মাণ করবে? আমার বিশ্রামের স্থান কোথায়! 50 আমার হাতই কি এই বস্তুগুলি নির্মাণ করে নি!’যিশাইয় 66:1-2 51 ‘আপনারা একগুঁয়ে লোক! ঈশ্বরকে আপনারা নিজ নিজ হৃদয় সঁপে দেন নি! আপনারা তাঁর কথা শুনতে চান নি! আপনারা সব সময় পবিত্র আত্মা যা বলতে চাইছেন তা প্রতিরোধ করে আসছেন৷ আপনাদের পিতৃপুরুষরা য়েমন করেছিলেন, আপনারাও তাদের মতোই করছেন৷ 52 এমন কোন ভাববাদী ছিলেন কি যাকে আপনাদের পিতৃপুরুষেরা নির্য়াতন করেন নি? সেই ধার্মিক ব্যক্তির আগমণের কথা যাঁরা বহুপূর্বে ঘোষণা করেছিলেন আপনাদের পিতৃপুরুষরা তাদেরকে খুন করেছেন; আর এখন আপনারা সেই ধার্মিককে শত্রুর হাতে সঁপে দিয়ে হত্যা করছেন৷ 53 আপনারা মোশির বিধি-ব্যবস্থা পেয়েছিলেন, ঈশ্বরই তাঁর স্বর্গদূতদের মাধ্যমে তা দিয়েছিলেন, কিন্তু আপনারা তা পালন করেন নি!’ 54 ইহুদী নেতারা স্তিফানের এইসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে গেল৷ স্তিফানের প্রতি তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে দাঁতে দাঁত ঘষতে লাগল৷ 55 স্তিফান পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে স্বর্গের দিকে তাকালেন আর দেখলেন ঈশ্বরের মহিমা, দেখলেন যীশু ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন৷ 56 তিনি বললেন, ‘দেখ! আমি দেখছি স্বর্গ খোলা রয়েছে; আর মানবপুত্র ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন!’ 57 তখন ইহুদী নেতারা জোরে চিত্কার করে উঠল, আর নিজেদের কানে হাত চাপা দিল৷ এরপর সবাই মিলে এক সঙ্গে তাঁর দিকে ছুটে গেল৷ 58 তারা স্তিফানকে মেরে ফেলার জন্য তাঁকে টানতে টানতে শহর থেকে বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর মারতে লাগল৷ যাঁরা স্তিফানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছিল, তারা শৌল নামে এক যুবকের পায়ের কাছে তাদের আলখাল্লা খুলে জমা রাখল৷ 59 তারা যখন স্তিফানকে পাথর মেরে চলেছে তখন তিনি প্রার্থনা করে বললেন, ‘প্রভু যীশু আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!’ 60 এরপর তিনি হাঁটু গেড়ে বসে চিত্কার করে বললেন, ‘প্রভু, এঁদের বিরুদ্ধে এই পাপ গন্য করো না!’ এই বলে তিনি মৃত্যুতে ঢলে পড়লেন৷
1 আর শৌল স্তিফানের হত্যার অনুমোদন করেছিলেন৷ 2 কয়েকজন ধার্মিক লোক এসে স্তিফানকে কবর দিলেন; আর স্তিফানের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করলেন৷ সেইদিন থেকে জেরুশালেমের মণ্ডলীর উপর ভীষণ নির্য়াতন শুরু হল৷ প্রেরিতগণ ছাড়া সবাই যিহূদিযা ও শমরিযা প্রদেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেন৷ এদিকে শৌল বিশ্বাসী সমাবেশকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন৷ বাড়ি বাড়ি ঢুকে তিনি স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে টানতে টানতে নিয়ে এসে কারাগারে ভরলেন৷ 3 4 বিশ্বাসীরা চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল; আর তারা য়েখানেই গেল সেখানেই সুসমাচার প্রচার করতে লাগল৷ 5 ফিলিপ শমরিয়া শহরে গিয়ে সেখানে তিনি খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করলেন৷ 6 লোকেরা যখন ফিলিপের কথা শুনল এবং তিনি য়ে সব অলৌকিক কাজ করছিলেন তা দেখল, তখন তাঁর কথায় আরো মন দিল৷ 7 অশুচি আত্মায় পাওয়া লোকদের মধ্য থেকে চিত্কার করতে করতে সেইসব অশুচি আত্মা বের হয়ে এল৷ অনেক পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোক ও খোঁড়া লোক সুস্থ হল৷ 8 এর ফলে সেই শহরে মহা আনন্দের সাড়া জাগল৷ 9 সেই শহরে শিমোন নামে একজন লোক ছিল৷ ফিলিপ সেই শহরে আসার আগে শিমোন বহুদিন ধরে সেই শহরে যাদুখেলা করত৷ এইভাবে সে শমরিয়ার লোকদের অবাক করে দিত৷ সে নিজেকে একজন মহাপুরুষ বলে জাহির করত৷ 10 ছোট বড় সকলেই তার কথা মন দিয়ে শুনত৷ তারা বলত, ‘এই লোকের মধ্যে ঈশ্বরের সেই শক্তি আছে যাকে ‘মহাপরাক্রম’ ও বলা চলে৷’ 11 লোকেরা তার কথা শুনত কারণ দীর্ঘ দিন ধরে সে লোকদের যাদুমন্ত্রের চমকে মুগ্ধ করে রেখেছিল৷ 12 কিন্তু ফিলিপ যখন তাদেরকে ঈশ্বরের সুসমাচার, তাঁর রাজ্য ও যীশু খ্রীষ্টের নামের বিষয় জানালেন, তখন স্ত্রী-পুরুষ সকলে ফিলিপকে বিশ্বাস করে বাপ্তিস্ম নিল৷ 13 আর শিমোন নিজেও বিশ্বাস করল ও বাপ্তিস্ম নিল৷ বাপ্তাইজ হওয়ার পর সে ফিলিপের কাছে কাছে থাকতে লাগল, আর ফিলিপের দ্বারা অনেক অলৌকিক কাজ ও নানা পরাক্রম কাজ হচ্ছে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 14 প্রেরিতেরা তখনও জেরুশালেমে ছিলেন, তাঁরা শুনতে পেলেন য়ে শমরিয়ায় লোকেরা ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে, তখন তাঁরা পিতর ও য়োহনকে সেখানে পাঠালেন৷ 15 পিতর ও য়োহন এসে শমরিয়ায় খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের জন্য প্রার্থনা করলেন য়েন তারা পবিত্র আত্মা লাভ করে; 16 কারণ এই লোকেরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হলেও তখনও পর্যন্ত তাদের কারোর ওপর পবিত্র আত্মা অবতরণ করেন নি৷ 17 এইজন্য পিতর ও য়োহন প্রার্থনা করলেন; আর সেই দুই প্রেরিত, লোকদের মাথায় হাত রাখলে তারা পবিত্র আত্মা লাভ করল৷ 18 শিমোন যখন দেখল য়ে, প্রেরিতদের হাত রাখার মাধ্যমে পবিত্র আত্মা লাভ হচ্ছে, তখন সে টাকা এনে তাদের বলল, 19 ‘আমাকেও এই ক্ষমতা দিন য়েন আমি যার ওপর আমার দুহাত রাখব, সে এই পবিত্র আত্মা পায়৷’ 20 পিতর শিমোনকে বললেন, ‘তুমি ও তোমার টাকা চিরকালের মত ধ্বংস হয়ে যাক্! কারণ ঈশ্বরের দান তুমি টাকা দিয়ে কিনবে বলে ভেবেছ৷ 21 এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তোমার কোন অধিকার বা অংশ নেই, কারণ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তোমার অন্তর মোটেই সরল নয়৷ 22 তাই তুমি এই মন্দতা থেকে তোমার মন-ফিরাও! আর প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর, হয়তো তোমার মনের এই মন্দচিন্তার জন্য ক্ষমা পেলেও পেতে পার৷ 23 কারণ আমি দেখছি তোমার মধ্যে খুব ঈর্ষা আছে আর তুমি পাপের কাছে বন্দী৷’ 24 তখন শিমোন বলল, ‘আপনারাই আমার জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন, য়েন আপনারা যা বললেন তার কিছুই আমার প্রতি না ঘটে!’ 25 প্রেরিতেরা যীশুর বিষয়ে যা জানতেন, সে সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিয়ে ও প্রভুর বার্তা প্রচার করে জেরুশালেমে ফিরে চললেন, যাবার পথে তাঁরা শমরিয়ার বিভিন্ন গ্রামে সুসমাচার প্রচার করলেন৷ 26 প্রভুর এক দূত ফিলিপকে বললেন, ‘প্রস্তুত হও, দক্ষিণে য়ে পথ জেরুশালেম থেকে ঘসার দিকে নেমে গেছে, সেই পথ ধরে নেমে যাও৷’ 27 তখন ফিলিপ প্রস্তুত হয়ে সেই পথ ধরে রওনা দিলেন এবং সেই পথে একজন ইথিওপিয়ানকে দেখতে পেলেন, তিনি নপুংসক৷ তিনি ইথিওপিয়ার কান্দাকি রাণীর কোষাধ্যক্ষ ছিলেন৷ ইনি জেরুশালেমে উপাসনা করতে গিয়েছিলেন৷ 28 ফেরার পথে তিনি তাঁর রথে বসে ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তক থেকে পড়ছিলেন৷ 29 তখন পবিত্র আত্মা ফিলিপকে বললেন, ‘ঐ রথের কাছে যাও, তাঁর সঙ্গ ধর!’ 30 ফিলিপ দৌড়ে রথের কাছে গিয়ে শুনলেন, সেই কোষাধ্যক্ষ ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তক থেকে পড়ছেন৷ ফিলিপ জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি যা পড়ছেন তা কি বুঝতে পারছেন?’ 31 তিনি বললেন, ‘কি করে বুঝব? যদি বুঝিয়ে দেওয়ার কেউ না থাকে?’ আর তিনি ফিলিপকে রথে উঠে এসে তার কাছে বসতে বললেন৷ 32 শাস্ত্রের য়ে অংশটি তিনি পাঠ করছিলেন তা হল:‘হত হবার জন্য মেষের মতো তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল৷ লোম ছাঁটাইকারীদের সামনে ভেড়া য়েমন মুখ বুজে থাকে, তেমনি তিনি মুখ খোলেন নি৷ 33 তাঁর হীন অবস্থায়, তাঁর ন্যায় অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হল৷ কেউ আর কখনও তাঁর বংশধরদের কথা বলবে না, কারণ পৃথিবীতে তাঁর জীবন সমাপ্ত হল৷’যিশাইয় 53:7-8 34 সেই কোষাধ্যক্ষ ফিলিপকে বললেন, ‘অনুগ্রহ করে বলুন, ভাববাদী কার বিষয়ে এই কথা বলছেন? তিনি কি তাঁর নিজের বিষয়ে বলছেন, অথবা অন্য কারো বিষয়ে?’ 35 তখন ফিলিপ শাস্ত্রের সেই অংশ থেকে শুরু করে যীশুর বিষয়ে সুসমাচার তাঁকে জানালেন৷ 36 তাঁরা রাস্তা দিয়ে য়েতে য়েতে জলাশয়ের কাছে এসে হাজির হলে সেই নপুংসক বললেন, ‘দেখুন! এখানে জল আছে! বাপ্তাইজ হতে আমার বাধা কোথায়?’ 37 38 তিনি রথ থামাতে হুকুম করলেন, আর ফিলিপ ও নপুংসক উভয়ে জলে নামলেন৷ ফিলিপ তাঁকে বাপ্তিস্ম দিলেন৷ 39 তাঁরা যখন জলের মধ্য থেকে উঠলেন, তখন প্রভুর আত্মা ফিলিপকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন, সেই কোষাধ্যক্ষ তাকে আর দেখতে পেলেন না; কিন্তু আনন্দ করতে করতে তাঁর পথে এগিয়ে চললেন৷ 40 ফিলিপ নিজেকে অস্দোদে দেখতে পেলেন, আর তিনি কৈসরিয়ার পথে রওনা হয়ে যাত্রা পথে সব নগরে সুসমাচার প্রচার করলেন৷
1 এদিকে শৌল জেরুশালেমে যীশুর অনুগামীদের তখনও হত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন৷ তিনি মহাযাজকের কাছে গেলেন৷ 2 দম্মেশকস্থ সমাজ-গৃহে ইহুদীদের দেবার জন্য মহাযাজকের কাছে চিঠিগুলি চাইলেন, য়েন স্ত্রী হোক বা পুরুষ হোক, খ্রীষ্টের অনুগামী এমন কোন লোককে পেলেই গ্রেপ্তার করে জেরুশালেমে নিয়ে আসতে পারেন৷ 3 তাই শৌল দম্মেশকে রওনা হয়ে গেলেন৷ য়েতে য়েতে তিনি যখন দম্মেশকের কাছাকাছি এলেন, সেই সময় হঠাত্ আকাশ থেকে এক উজ্জ্বল আলো তাঁর চারিদিকে চমকে উঠল৷ 4 তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন এবং এক রব শুনতে পেলেন, সেই রব তাঁকে বলছে; ‘শৌল, শৌল! কেন তুমি আমাকে এত কষ্ট দিচ্ছ?’ 5 শৌল বললেন, ‘প্রভু আপনি কে?’তিনি বললেন, ‘আমি যীশু; তুমি যার ক্ষতি করার চেষ্টা করছ৷ 6 ওঠ, ঐ শহরে যাও আর তোমায় কি করতে হবে তা তোমায় বলা হবে৷’ 7 য়ে সব পুরুষ তাঁর সঙ্গে যাচ্ছিল তারা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইল৷ তারা সেই রব শুনতে পেল, কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না৷ 8 শৌল মাটি থেকে উঠলেন, কিন্তু তিনি যখন চোখ খুললেন তখন কিছুই দেখতে পেলেন না৷ তাই তারা তাকে হাত ধরে দম্মেশকে নিয়ে গেল৷ 9 তিন দিন তিনি সম্পূর্ণ অন্ধ অবস্থায় রইলেন, সেই সময় তিনি অন্ন জল কিছুই মুখে তুললেন না৷ 10 দম্মেশকে অননিয় নামে একজন খ্রীষ্টের অনুগামী ছিলেন৷ এক দর্শনের মাধ্যমে প্রভু তাঁকে বললেন, ‘অননিয়!’তিনি বললেন, ‘প্রভু, এই তো আমি৷’ 11 প্রভু তাকে বললেন, ‘ওঠ, আর ‘সরল’ নামে রাস্তায় যাও৷ সেখানে যিহূদার বাড়ীর খোঁজ কর৷ সেখানে তার্ষ থেকে এসেছে শৌল বলে একজন লোক, তার খোঁজ কর, কারণ সে প্রার্থনা করছে৷ 12 তার এই দর্শনলাভ হয়েছে য়ে অননিয় নামে একজন লোক এসে তার ওপর হাত রাখাতে সে আবার তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছে৷’ 13 অননিয় বললেন, ‘প্রভু, আমি অনেক লোকের কাছে এই লোকের বিষয়ে শুনেছি৷ 14 আর এখানে যত লোক আপনাকে বিশ্বাস করে,তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবার জন্য সে প্রধান যাজকদের কাছ থেকে বিশেষ পরোয়ানা নিয়ে এসেছে৷’ 15 কিন্তু প্রভু তাকে বললেন, ‘তুমি যাও, কারণ অইহুদীদের কাছে, রাজাদের ও ইস্রায়েলীয়দের কাছে আমার নাম নিয়ে যাবার জন্য আমি তাকে মনোনীত করেছি৷ 16 আমার নামের জন্য তাকে কত দুঃখভোগ করতে হবে, আমি নিজে তাকে তা দেখিয়ে দেব৷’ 17 তখন অননিয় যিহূদার বাড়িতে গেলেন৷ তিনি শৌলের ওপর দুহাত রেখে বললেন, ‘ভাই শৌল, প্রভু যীশু আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছেন৷ এখানে আসার পথে তোমায় তিনি দর্শন দিয়েছিলেন৷ যীশু তোমার কাছে আমাকে পাঠালেন, য়েন তুমি আবার দেখতে পাও আর পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হতে পার৷’ 18 সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চোখ থেকে মাছের আঁশের মত একটা কিছু খসে পড়ল, আর শৌল আবার দেখতে পেলেন৷ পরে তিনি উঠে গিয়ে বাপ্তিস্ম নিলেন৷ 19 এরপর কিছু খাওয়া-দাওয়া করে সবল হলেন৷তিনি কিছুদিন দম্মেশেকে অনুগামীদের সঙ্গে থাকলেন৷ 20 এরপর তিনি সরাসরি সমাজ-গৃহে গিয়ে যীশুর কথা প্রচার করতে লাগলেন৷ তিনি বললেন, ‘এই যীশুই হচ্ছেন ঈশ্বরের পুত্র৷’ 21 তার কথা শুনে সকলে আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তারা বলল, ‘একি., সেই লোক নয় য়ে জেরুশালেমে যাঁরা যীশুর নামে বিশ্বাস করত তাদের ধ্বংস করত? আর এখানে সে যীশুর অনুগামীদের গ্রেপ্তার করে প্রধান যাজকের কাছে নিয়ে যাবার জন্য কি আসে নি?’ 22 কিন্তু শৌল ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, আর দম্মেশকে য়ে সব ইহুদী বাস করত, শৌল তর্কে তাদেরকে নীরব করে দিলেন, তিনি প্রমাণ দিতে থাকলেন য়ে যীশুই খ্রীষ্ট৷ 23 বেশ কিছু দিন পর ইহুদীরা শৌলকে হত্যা করার চক্রান্ত করতে লাগল৷ 24 কিন্তু শৌল তাদের চক্রান্ত জানতে পারলেন৷ ইহুদীরা তাকে হত্যা করার জন্য শহরের প্রধান ফটকগুলির ওপর দিন রাত নজর রাখতে লাগল৷ 25 কিন্তু যাঁরা শৌলের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছিল, তারা শৌলকে শহর ত্যাগে সাহায্য করল৷ তারা শৌলকে একটা ঝুড়িতে রেখে শহরের প্রাচীরের এক গর্ত দিয়ে ঝুড়িশুদ্ধ শৌলকে বাইরে নামিয়ে দিল৷ 26 এরপর শৌল জেরুশালেমে গেলেন৷ সেখানে তিনি যীশুর অনুগামীদের সঙ্গে য়োগ দিতে চেষ্টা করলেন; কিন্তু তাঁরা সকলে তাঁকে ভয় করলেন৷ তাঁরা বিশ্বাস করতে চাইলেন না য়ে তিনি সত্যিকার যীশুর অনুগামী হয়েছেন৷ 27 কিন্তু বার্ণবা শৌলকে গ্রহণ করে তাঁকে নিয়ে প্রেরিতদের কাছে গেলেন৷ দম্মেশকের পথে শৌল কিভাবে যীশুর দেখা পেয়েছেন ও প্রভু যীশু য়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আর কিভাবে তিনি দম্মেশকে সাহসের সঙ্গে যীশুর নাম প্রচার করেছেন, সেসব কথা তাদের সবিস্তারে জানালেন৷ 28 শৌল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের সঙ্গে জেরুশালেমে থাকতেন, তিনি সেখানে সব জায়গায় গিয়ে সাহসের সঙ্গে প্রভুর নাম প্রচার করতেন৷ 29 তিনি গ্রীকভাষী ইহুদীদের সঙ্গে তর্ক করেছিলেন বলে তারা তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করতে লাগল৷ 30 ভাইয়েরা সে কথা জানতে পেরে তাঁকে কৈসরিয়াতে নিয়ে গেলেন ও সেখান থেকে তার্ষে পাঠিয়ে দিলেন৷ 31 সেই সময় যিহূদিয়া, গালীল ও শমরিয়ায় বিশ্বাসী মণ্ডলীগুলিতে শান্তি বিরাজ করছিল৷ বিশ্বাসীরা প্রভুর ভয়ে জীবনযাপন করত ও পবিত্র আত্মায় উত্সাহিত হত; এর ফলে দলটি শক্তিশালী হয়ে উঠল এবং ক্রমে ক্রমে সংখ্যায় বৃদ্ধিলাভ করতে লাগল৷ 32 পিতর জেরুশালেমের আশে পাশে বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করতে করতে লুদ্দার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের কাছে এলেন৷ 33 লুদ্দায় তিনি ঐনিয় নামে একজন পঙ্গু লোকের দেখা পান; সে আট বছর ধরে পক্ষাঘাতে শয়্য়াশাযী ছিল৷ 34 পিতর তাকে বললেন, ‘ঐনিয় যীশু তোমায় সুস্থ করেছেন, তুমি ওঠ, বিছানা গুটিয়ে নাও৷ তুমি নিজেই তা পারবে৷’ সঙ্গে সঙ্গে ঐনিয় উঠে দাঁড়াল৷ 35 তখন লুদ্দা ও শারোণের সব লোক তাকে দেখে প্রভুর প্রতি ফিরল ও বিশ্বাসী হল৷ 36 যাফোতে টাবিথা বা দর্কা (যার অর্থ ‘হরিণী’) নামে এক শিষ্য ছিলেন৷ তিনি সব সময় লোকের উপকার করতেন, বিশেষ করে গরীবদের সাহায্য করতেন৷ 37 পিতর যখন লুদ্দায় ছিলেন টাবিথা অসুস্থ হয়ে মারা যান; তাই তারা তার দেহ স্নান করিয়ে ওপরের ঘরে শুইয়ে রাখল৷ 38 লুদ্দা যাফোর কাছাকাছি ছিল৷ অনুগামীরা যখন শুনলেন য়ে পিতর লুদ্দায় আছেন, তখন তারা দুজন লোককে সেখানে পাঠিয়ে অনুরোধ করল, ‘য়েন পিতর তাড়াতাড়ি করে একবার তাদের ওখানে আসেন!’ 39 তখন পিতর প্রস্তুত হয়ে তাদের সঙ্গে চললেন৷ তিনি সেখানে হাজির হলে তারা তাঁকে ওপরের সেই ঘরে নিয়ে গেল; আর বিধবারা সকলে তাঁর চারদিকে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগল, দর্কা জীবিত অবস্থায় তাদের সঙ্গে থাকবার সময়ে য়েসব পোশাকগুলি তৈরী করেছিলেন তা দেখাতে লাগল৷ 40 পিতর সকলকে ঘরের বাইরে বের করে দিয়ে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করলেন৷ তারপর সেই দেহের দিকে ফিরে তিনি বললেন, ‘টাবিথা, ওঠ!’ তাতে তিনি চোখ খুললেন ও পিতরকে দেখে উঠে বসলেন৷ 41 তখন পিতর হাত বাড়িয়ে তাঁকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলেন৷ এরপর তিনি বিশ্বাসীদের ও সেই বিধবাদের ডেকে তাঁকে জীবিত দেখালেন৷ 42 এই কথা যাফোর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল আর অনেক লোক প্রভুর ওপর বিশ্বাস করল৷ 43 পিতর যাফোতে শিমোন নামে এক চামড়া ব্যবসাযীর ঘরে অনেক দিন রইলেন৷
1 কৈসরিয়ায় কর্ণীলিয়া নামে একজন লোক ছিলেন; ইনি ছিলেন ‘ইতালীয়’ বাহিনীর একজন সেনাপতি৷ 2 তিনি ছিলেন ঈশ্বর ভক্ত, তাঁর গৃহস্থ সমস্ত পরিজন সত্যময় ঈশ্বরের উপাসনা করত৷ তিনি ইহুদীদের মধ্যে গরীব দুঃখীদের অর্থ দিতেন আর সবসময়ই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাতেন৷ 3 একদিন প্রায় তিনটের সময় এক দর্শনের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন য়ে ঈশ্বরের এক দূত তাঁর কাছে এসে বলছেন, ‘কর্ণীলিয়!’ 4 কর্ণীলিয় স্বর্গদূতের দিকে চেয়ে ভয় পেয়ে বললেন, ‘মহাশয়, আপনি কি চান?’সেই স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘কর্ণীলিয় তোমার প্রার্থনা ঈশ্বর শুনেছেন; গরীবদের তুমি য়ে সাহায্য কর, তা তিনি দেখেছেন৷ ঈশ্বর তোমায় স্মরণ করেছেন৷ 5 তুমি যাফো শহরে লোকদের পাঠাও, সেখানে শিমোন নামে একজন লোক আছে, যার অপর নাম পিতর, তোমার লোকেরা সেখানে গিয়ে তাকে এখানে নিয়ে আসুক৷ 6 সে চামড়ার ব্যবসাযী শিমোনের বাড়িতে আছে, সেই বাড়ি সমুদ্রের ধারে৷’ 7 স্বর্গদূত কথা বলে চলে গেলে পরে কর্ণীলিয় দুজন কর্মচারীকে ও একজন সৈনিককে ডেকে পাঠালেন৷ ঈশ্বরভক্ত এই সৈনিকটি কাজে সাহায্য করার ব্যাপারে সব সময়ই কর্ণীলিয়র কাছে কাছে থাকত৷ 8 এই তিন ব্যক্তির কাছে কর্ণীলিয় সব কিছু বুঝিয়ে তাদের যাফোতে পাঠালেন৷ 9 পরের দিন তারা যখন যাফোর কাছাকাছি পৌঁছলো৷ সেই সময়ে পিতর প্রার্থনা করার জন্য ছাদের উপর উঠে ছিলেন৷ বেলা তখন ভর দুপুর৷ 10 পিতরের খিদে পেল এবং তিনি খেতে চাইলেন৷ নীচে লোকেরা তখন পিতরের জন্য খাবার প্রস্তুত করছে, এমন সময় তিনি আবিষ্ট হলেন৷ 11 তিনি দেখলেন আকাশ মুক্ত হয়েছে আর একটা কিছু নেমে আসছে৷ সেটা দেখতে একটা বড় চাদরের মত, তার চারটে খুঁট ধরে কেউ য়েন তা মাটিতে নামিয়ে দিচ্ছে৷ 12 তার মধ্যে পৃথিবীর সব রকমের পশু ও সরীসৃপ এবং আকাশের নানা রকমের পক্ষী রয়েছে৷ 13 এরপর সেই রব পিতরকে বলল, ‘পিতর ওঠ, মার ও খাও৷’ 14 পিতর বললেন, ‘প্রভু কখনই না! কারণ আমি কখনও কোন অশুদ্ধ বা অপবিত্র কিছু খাই নি৷’ 15 তখন আবার এই রব শোনা গেল, ‘ঈশ্বর যা শুদ্ধ করেছেন তা তুমি ‘অশুদ্ধ’ বোলো না!’ 16 এইভাবে তিন বার ঘটে যাবার পর সেই চাদরটি আকাশে তুলে নেওয়া হল৷ 17 পিতর য়ে দর্শন পেয়েছিলেন তার অর্থ কি হতে পারে তা যখন তিনি মনে মনে চিন্তা করছেন, সেই সময় কর্ণীলিয়াসের পাঠানো ঐ লোকেরা শিমোনের বাড়ির খোঁজ করতে করতে বাড়ির ফটকে এসে হাজির হল৷ 18 তারা জিজ্ঞেস করল, ‘শিমোন যাকে পিতর বলে তিনি কি এ বাড়িতে রয়েছেন?’ 19 পিতর তখনও সেই দর্শনের বিষয়ে চিন্তা করছেন, তখন আত্মা তাঁকে বললেন, ‘দেখ! তিন জন লোক তোমার খোঁজ করছে৷ 20 তুমি উঠে নীচে যাও, বিনা দ্বিধায় তাদের সঙ্গে যাও, কারণ আমিই তাদের পাঠিয়েছি৷’ 21 তখন পিতর নীচে গিয়ে সেই লোকদের বললেন, ‘দেখুন, আপনারা যাকে খুঁজছেন, আমিই সেই লোক৷ আপনারা এখানে কেন এসেছেন?’ 22 তারা বলল, ‘আমরা সেনাপতি কর্ণীলিয়াসের কাছ থেকে এসেছি৷ তিনি একজন ধার্মিক লোক, তিনি ঈশ্বরের উপাসনা করেন৷ ইহুদীদের কাছেও তিনি শ্রদ্ধার পাত্র৷ স্বর্গদূত কর্ণীলিয়াসকে নির্দেশ দিয়েছেন য়েন আপনাকে তাঁর বাড়ীতে আসতে আমন্ত্রণ দেওয়া হয়৷ আপনি কি বলবেন তা য়েন তিনি শুনতে পান৷’ 23 তখন পিতর তাদের ভেতরে নিয়ে গিয়ে রাতটা তাঁর ওখানে থাকার ব্যবস্থা করলেন৷পর দিন পিতর প্রস্তুত হয়ে সেই লোকদের সঙ্গে রওনা হয়ে গেলেন৷ যাফো থেকে কয়েকজন বিশ্বাসী ভাইও পিতরের সঙ্গে গেলেন৷ 24 পরের দিন তাঁরা কৈসরিয়া শহরে এলেন৷ কর্ণীলিয়া তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তিনি তাঁর আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তাঁর বাড়িতে ডেকেছিলেন৷ 25 পিতর যখন ভেতরে গেলেন তখন কর্ণীলিয় এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত্ করলেন; আর উপুড় হয়ে পড়ে পিতরকে প্রণাম জানালেন৷ 26 কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, ‘আহা, কি করছেন, উঠুন! আমি তো একজন সামান্য মানুষ মাত্র৷’ 27 পিতর তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে ভেতরে গিয়ে দেখলেন, সেখানে বহুলোক এসে জড়ো হয়েছে৷ 28 পিতর তাঁদের বললেন, ‘আপনারা জানেন, অন্য জাতের লোকের সঙ্গে মেলামেশা করা বা তাদের বাড়ি যাওয়া ইহুদীদের জন্য বিধি-সম্মত কাজ নয়; কিন্তু ঈশ্বর আমাকে দেখিয়ে দিয়েছেন য়ে, কোন মানুষকে ‘অশুচি’ বা ‘অপবিত্র’ বলা ঠিক নয়৷ 29 তাই আমাকে ডেকে পাঠান হল, আর আমি বিনা আপত্তিতে চলে এলাম৷ এখন আমি জানতে চাই আপনারা কি কারণে আমায় ডেকে পাঠিয়েছেন৷’ 30 কর্ণীলিয় বললেন, ‘চারদিন আগে এই সময় আমি আমার ঘরে বসে প্রার্থনা করছিলাম, বেলা তখন প্রায় তিনটে, সেই সময় হঠাত্ এক ব্যক্তি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন, তাঁর গায়ে ছিল উজ্জ্বল পোশাক৷ 31 তিনি বললেন, ‘কর্ণীলিয় তোমার প্রার্থনা গ্রাহ্য হয়েছে, আর তুমি গরীব দুঃখীদের য়ে সাহায্য কর তা-ও ঈশ্বর দেখেছেন৷ ঈশ্বর তোমাকে স্মরণ করেছেন; 32 তাই তুমি যাফোয় কিছু লোক পাঠাও এবং শিমোন যাকে পিতর বলে তাকে এখানে নিয়ে এস৷ সমুদ্রের ধারে শিমোন নামে য়ে চামড়ার ব্যবসাযী আছে, সে তার বাড়িতে আছে৷’ 33 তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে আপনার কাছে লোক পাঠালাম; আর আপনি বড় অনুগ্রহ করে এখানে এসেছেন৷ এখন আমরা সকলে এখানে ঈশ্বরের সামনে আছি; প্রভু আপনাকে য়ে সব কথা বলতে আদেশ করেছেন আমরা সকলে তা শুনব৷’ 34 তখন পিতর বলতে শুরু করলেন, ‘এখন আমি সত্যি সত্যিই বুঝতে পেরেছি য়ে ঈশ্বর কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন না৷ 35 প্রত্যেক জাতির মধ্যে য়ে কেউ ঈশ্বরের উপাসনা করে ও ন্যায় কাজ করে, ঈশ্বর এমন লোকদের গ্রহণ করেন৷ 36 তিনি ইস্রায়েলের লোকদের কাছে তাঁর সুসমাচার পাঠিয়েছিলেন৷ তিনি সেই সুসমাচারে জানালেন য়ে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই শান্তি লাভ হয়৷ তিনি সকলেরই প্রভু! 37 সমগ্র যিহূদাতে কি ঘটেছিল সে সব কথা আপনারা শুনেছেন৷ য়োহন বাপ্তাইজক লোকেদের কাছে বাপ্তিস্মের কথা প্রচার করার পর গালীলে এই ঘটনাগুলি শুরু হয়৷ 38 আপনারা সেই নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে শুনেছেন, শুনেছেন ঈশ্বর কিভাবে তাঁকে পবিত্র আত্মায় ও পরাক্রমের সঙ্গে অভিষেক করেছিলেন৷ যীশু সর্বত্র মানুষের মঙ্গল করে বেড়াতেন, আর যাঁরা দিয়াবলের কবলে পড়েছিল তাদের তিনি মুক্ত করতেন, কারণ ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে ছিলেন৷ 39 যিহূদা ও জেরুশালেমে যীশু যা কিছু করেছেন, আমরা তা স্বচক্ষে দেখেছি, আমরা তার সাক্ষী৷ তারা তাঁকে কাঠের তৈরী এক ক্রুশে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে; 40 কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যুর তিন দিনের মাথায় জীবিত করেছেন৷ ঈশ্বর লোকদের কাছে যীশুকে জীবিতরূপে দেখালেন৷ 41 কিন্তু তিনি সবাইকে দেখা দেন নি৷ ঈশ্বর পূর্বেই সাক্ষীরূপে যাদের মনোনীত করেছিলেন, কেবল তারাই তাঁকে দেখতে পেয়েছিলেন, আমরাই সেইসব সাক্ষী! মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হবার পর আমরা যীশুর সঙ্গে পান-আহার করেছি; 42 আর তিনি আমাদের আদেশ দিলেন, য়েন আমরা লোকদের মাঝে প্রচার করি আর সাক্ষ্য দিই য়ে তিনিই সেই ব্যক্তি, যাকে ঈশ্বর সমস্ত জীবিত ও মৃত সকলের বিচারকর্তা করে মনোনীত করেছেন৷ 43 য়ে কেউ যীশুকে বিশ্বাস করবে, সে পাপের ক্ষমা পাবে৷ যীশুর নামে ঈশ্বর সেইসব লোকেদের পাপ ক্ষমা করবেন৷ সমস্ত ভাববাদী বলে গেছেন য়ে এ সত্য৷’ 44 পিতর যখন এইসব কথা বলছিলেন, তখন যাঁরা সেখানে সেইসব কথা শুনছিল, তাদের সকলের ওপর পবিত্র আত্মা নেমে এলেন৷ 45 ইহুদী সম্প্রদায় থেকে য়ে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা পিতরের সঙ্গে সেখানে এসেছিলেন তাঁরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, কারণ অইহুদীদের ওপরও পবিত্র আত্মার দান নেমে এল৷ 46 কারণ তাঁরা ওদেরকে নানা ভাষায় কথা বলতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে শুনলেন৷ 47 তখন পিতর বললেন, ‘কেউ কি এই লোকদের জলে বাপ্তাইজ করতে অস্বীকার করতে পারে? আমরা য়েমন পবিত্র আত্মা পেয়েছি তারাও তো তেমনি পেয়েছে!’ 48 তখন তিনি যীশু খ্রীষ্টের নামে কর্ণীলিয়, তার পরিবারের লোকদের ও তাদের বন্ধুদের জলে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করতে আদেশ করলেন৷ এরপর তাঁরা পিতরকে তাঁদের সঙ্গে কিছু দিন থাকতে অনুরোধ করলেন৷
1 যিহূদিয়ার প্রেরিতেরা এবং বিশ্বাসী ভাইয়েরা শুনতে পেলেন য়ে অইহুদীরাও ঈশ্বরের শিক্ষা গ্রহণ করেছে৷ 2 পিতর যখন জেরুশালেমে এলেন, তখন কিছু ইহুদী সম্প্রদায়ের খ্রীষ্ট বিশ্বাসী তাঁর সমালোচনা করতে লাগল৷ 3 তারা বলল, ‘দেখ, তুমি যাঁরা ইহুদী নয় এবং যাদের সুন্নত হয় নি তাদের ঘরে গিয়েছিলে, এমনকি সেখানে খাওয়া-দাওয়া করেছিলে!’ 4 তখন পিতর তাদেরকে আগের সব ঘটনা বিস্তারিতভাবে জানিয়ে বললেন, 5 ‘আমি যাফো শহরে প্রার্থনা করছিলাম, সেই সময় ভাবাবিষ্ট অবস্থায় এক দর্শন পেলাম৷ আমি দেখলাম, একটা বড় চাদরের মত কিছু, তার চারটি খুঁট ধরে আকাশ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তা আমার কাছে এলে 6 আমি ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখলাম তার মধ্যে ভূচর গৃহপালিত পশু, সকল হিংস্র বন্য জন্তু, সরীসৃপ ও আকাশের পাখিরা আছে৷ 7 তখন আমি এক রব শুনতে পেলাম যা আমায় বলছে, ‘পিতর ওঠ, এদের মেরে খাও!’ 8 কিন্তু আমি বললাম, ‘না, প্রভু এ হতে পারে না! কারণ অপবিত্র অশুদ্ধ কোন কিছু কখনও আমি খাই না!’ 9 আকাশ থেকে সেই রব দ্বিতীয় বার ভেসে এল, ‘ঈশ্বর যা শুদ্ধ করেছেন তুমি তা অপবিত্র বলো না৷’ 10 এইভাবে তিনবার সেই রব শোনা গেল, পরে সে সব আবার আকাশে টেনে তুলে নেওয়া হল, 11 আর আমি য়েখানে ছিলাম সেই বাড়িতে তখনই তিন জন লোক এল৷ তাদের কৈসরিয়া থেকে আমার কাছে পাঠানো হয়েছিল; 12 আর আত্মা আমায় বললেন, ‘কোনরকম দ্বিধা না করে তুমি ওদের সঙ্গে যাও৷ এই দুজন ভাইও আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন; আর আমরা কর্ণীলিয়র বাড়িতে গেলাম৷ 13 তিনি কিভাবে একজন স্বর্গদূতকে তাঁর বাড়িতে দাঁড়াতে দেখেছিলেন তা আমাদের জানালেন৷ সেই স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘যাফোতে লোকদের পাঠাও; সেখান থেকে শিমোন, যাকে পিতর বলে, তাকে আমন্ত্রণ দিয়ে আনাও৷ 14 তিনি এসে য়ে সব কথা বলবেন তারই দ্বারা তুমি ও তোমার গৃহের সকলে উদ্ধার লাভ করবে৷’ 15 আমি যখন কথা বলতে শুরু করলাম, পবিত্র আত্মা তখন তাদের ওপর নেমে এলেন, য়েমন শুরুতে আমাদের ওপর এসেছিলেন৷ 16 এরপর প্রভু যা বলেছিলেন তা আমার মনে পড়ল৷ প্রভু যীশু বলেছিলেন, ‘য়োহন জলে বাপ্তাইজ করছেন, কিন্তু তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে৷’ 17 আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করলে ঈশ্বর আমাদের য়ে দান দিয়েছিলেন, তেমনি তারা বিশ্বাসী হলে ঈশ্বর তাদেরকে সমান বরদান করলেন, সেক্ষেত্রে আমি কি ঈশ্বরের কাজে বাধাদান করতে পারি? না!’ 18 ইহুদী বিশ্বাসীরা যখন এই সব কথা শুনল, তারা তর্ক থামিয়ে দিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বলল, ‘তাহলে আমাদেরই মত অইহুদীদেরও ঈশ্বর জীবন লাভ করার জন্য মন-ফিরানোর সুয়োগ দিলেন!’ 19 স্তিফানের হত্যার পর নির্য়াতন শুরু হয়েছিল, ফলে বিশ্বাসীরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছিলেন৷ তাঁদের মধ্যে অনেকে বহুদূর অর্থাত্ ফৈনীকিয়া, কুপ্র ও আন্তিয়খিয়ায় পালিয়ে গিয়ে কেবলমাত্র ইহুদীদের কাছেই সুসমাচার প্রচার করেছিলেন৷ 20 তাঁদের মধ্যে কয়েকজন বিশ্বাসী কুপ্রীয় ও কুরিণীয় দেশের লোক ছিলেন, যাঁরা আন্তিয়খিয়ায় এসে গ্রীক ভাষাবাদী ইহুদীদের কাছে প্রভু যীশুর সুসমাচার প্রচার করেছিলেন৷ 21 প্রভুর পরাক্রম তাঁদের সাথে ছিল, ফলে বহুলোক প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করে তাঁর অনুগামী হল৷ 22 জেরুশালেমের বিশ্বাসী মণ্ডলী যখন সেই সংবাদ শুনলেন, তাঁরা বার্ণাবাকে আন্তিয়খিয়ায় পাঠালেন৷ 23 বার্ণবা একজন ভালো লোক ছিলেন; তিনি পবিত্র আত্মায় ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ ছিলেন৷ আন্তিয়খিয়ায় গিয়ে বার্ণবা দেখলেন য়ে ঈশ্বর সেখানকার লোকদের আরো কত আশীর্বাদ করেছেন৷ এতে তিনি খুবই সন্তুষ্ট হয়ে, তাদের হৃদয় দিয়ে প্রভুর প্রতি সদাই বিশ্বস্ত থাকতে উত্সাহ দিলেন; আর বহুসংখ্যক লোক প্রভুর সঙ্গে যুক্ত হলেন৷ 24 25 বার্ণবা শৌলের খোঁজে তার্ষে গেলেন৷ 26 সেখানে শৌলের দেখা পেয়ে তিনি তাঁকে আন্তিয়খিয়াতে নিয়ে এলেন৷ তাঁরা সম্পূর্ণ এক বছর বিশ্বাসী সমাবেশে থেকে বহু লোককে শিক্ষা দিলেন৷ আন্তিয়খিয়াতেই অনুগামীরা প্রথম ‘খ্রীষ্টীয়ান’ নামে অভিহিত হলেন৷ 27 এই সময কয়েকজন ভাববাদী জেরুশালেম থেকে আন্তিয়খিয়াতে এলেন৷ 28 তাঁদের মধ্যে আগাব নামে এক ভাববাদী উঠে দাঁড়িয়ে পবিত্র আত্মার প্রেরণায় ভাববাণী করলেন য়ে, ‘সারা জগতে এক মহা দুর্ভিক্ষ আসছে৷ লোকদের খাদ্যের অভাব হবে৷’ সম্রাট ক্লৌদিয়ের সময় এই দুর্ভিক্ষ হয়েছিল৷ 29 প্রত্যেক শিষ্য তাঁদের নিজ-নিজ সামর্থ্য অনুসারে যিহূদার বিশ্বাসী ভাইদের সাহায্য পাঠাবার জন্য মনস্থির করলেন৷ 30 তাই তাঁরা বার্ণবা ও শৌলের মাধ্যমে তাঁদের সংগৃহীত অর্থ পাঠিয়ে এই কাজ করলেন৷ 31 32 33 34 35 36
1 সেই সময় রাজা হেরোদ বিশ্বাসী মণ্ডলীর কিছু লোকের ওপর নির্য়াতন শুরু করলেন৷ 2 য়োহনের ভাই যাকোবকে হেরোদ তরবারির আঘাতে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন৷ 3 তিনি যখন দেখলেন এতে ইহুদীরা খুব খুশী হল, তখন তিনি পিতরকে গ্রেপ্তার করলেন৷ তখন ছিল ইহুদীদের নিস্তারপর্বেরসময়৷ 4 পিতরকে গ্রেপ্তার করে হেরোদ তাঁকে কারাগারে রাখলেন৷ তাঁকে পাহারা দেবার জন্য চারজন করে ষোল জন সৈনিককে নিযোগ করলেন৷ তিনি মনে করলেন নিস্তারপর্বের পরে পিতরকে জনসাধারণের কাছে বিচারের জন্য হাজির করবেন৷ 5 তাই পিতরকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হল, কিন্তু বিশ্বাসী মণ্ডলী তাঁর জন্য ঈশ্বরের কাছে একাগ্রভাবে প্রার্থনা করতে থাকলেন৷ 6 সেই রাতে পিতর দুজন প্রহরারত সৈনিকের মাঝখানে শুয়ে ঘুমাচ্ছিলেন, দুটি শেকল দিয়ে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং সৈনিকরা ফটকে পাহারা দিচ্ছিল৷ হেরোদ ঠিক করেছিলেন য়ে পরদিন সকালে বিচারের জন্য পিতরকে কারাগারের বাইরে আনবেন৷ 7 হঠাত্ প্রভুর এক দূত সেখানে এসে দাঁড়ালেন; আর কারাগারের মধ্যে একটা আলো ঝলসে উঠল৷ স্বর্গদূত পিতরের গায়ে মৃদু আঘাত দিয়ে তাঁকে জাগিয়ে বললেন, ‘শিগগির ওঠ!’ তখন তাঁর দুহাতের শেকল খসে পড়ল৷ 8 এরপর সেই স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, ‘পোশাক পর, আর পায়ে জুতো দাও৷’ পিতর সেই মত কাজ করলেন৷ তখন স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, ‘তোমার আলখাল্লাটি গায়ে দিয়ে আমাকে অনুসরণ কর৷’ 9 স্বর্গদূত বের হলেন আর পিতর তাঁর পিছু পিছু বাইরে বেরিয়ে গেলেন; কিন্তু স্বর্গদূত যা করলেন তা য়ে বাস্তবে সত্য তা তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না৷ তিনি মনে করলেন হয়তো কোন দর্শন দেখছেন৷ 10 তাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় পাহারাদারদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন, আর য়েখান দিয়ে শহরে যাওয়া যায়, লোহার সেই বিরাট ফটকের কাছে এলেন৷ সেই ফটক তাঁদের জন্য নিজে থেকে খুলে গেল; আর তাঁরা সেখান দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন৷ তাঁরা দুজনে একটা রাস্তার শেষ পর্যন্ত গেলেন, অমনি সেই স্বর্গদূত পিতরের কাছ থেকে হঠাত্ কোথায় মিলিয়ে গেলেন৷ 11 তখন পিতর বুঝলেন কি ঘটেছে এবং বলে উঠলেন, ‘আমি নিশ্চয় জানলাম য়ে এসবই বাস্তব৷ প্রভু তাঁর দূতকে পাঠিয়েছিলেন; আর তিনিই হেরোদের ও য়ে ইহুদীরা নির্য়াতন দেখবে ভেবেছিল তাদের হাত থেকে আমায় উদ্ধার করেছেন৷’ 12 এই কথা বুঝতে পেরে তিনি মরিয়মের বাড়ির দিকে রওনা দিলেন৷ এই মরিয়ম হলেন য়োহনের মা৷ এই য়োহনকে আবার মার্কও বলে৷ এদের বাড়িতে অনেকে জড়ো হয়ে প্রার্থনা করছিলেন৷ 13 পিতর এসে বাইরের দরজায় ঘা দিলে রোদা নামে একজন চাকরানী এসে দরজায় কে তা জিজ্ঞেস করল৷ 14 পিতরের কন্ঠস্বর চিনতে পেরে তার এত আনন্দ হল য়ে সে দরজা খুলতে ভুলে গেল, আর দৌড়ে ভেতরে গিয়ে এই খবর জানাল৷ সে বলল, ‘পিতর দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন!’ 15 তাঁরা তাকে বললেন, ‘তোমার মাথা খারাপ হয়েছে!’ কিন্তু সে যখন বারবার বলতে লাগল, তার কথাই ঠিক, তখন তাঁরা বললেন, ‘তবে ও নিশ্চয়ই স্বর্গদূত৷’ 16 কিন্তু পিতর দরজায় আঘাত করেই চললেন, আর তাঁরা দরজা খুলে তাঁকে দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 17 তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিতে তাদেরকে চুপ করতে বললেন এবং প্রভু কিভাবে সেই কারাগার থেকে তাঁকে উদ্ধার করে এনেছেন, সে কথা জানালেন৷ তিনি বললেন, ‘তোমরা যাকোবকে ও অন্যান্য ভাইদের এই ঘটনার কথা জানাও৷’ পরে তিনি সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে গেলেন৷ 18 সকাল হলে প্রহরারত সৈনিকদের মধ্যে একটা হৈচৈ পড়ে গেল৷ পিতরের কি হল, এই ভেবে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 19 এরপর হেরোদ পিতরকে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেন, কিন্তু তাঁকে না পেয়ে প্রহরীদের নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনি সেই প্রহরীদের প্রাণদণ্ডের আদেশ দিলেন৷এরপর হেরোদ যিহূদা ছেড়ে কৈসরিয়া শহরে গিয়ে কিছুকাল সেখানে থাকলেন৷ 20 হেরোদ সোরীয় ও সীদোনীয়ের লোকদের ওপর খুবই ক্রুদ্ধ ছিলেন৷ তারা দল বেঁধে হেরোদের সঙ্গে দেখা করতে এল৷ রাজার একান্ত সচিব ব্লান্তকে নিজেদের দলে টেনে তারা হেরোদকে শাস্তির জন্য অনুরোধ করল, কারণ তাদের দেশ রাজার দেশের ওপর খাদ্য়ের জন্য নির্ভরশীল ছিল৷ 21 এক নিরূপিত দিনে, হেরোদ রাজকীয় পোশাক পরে সিংহাসনে এসে বসলেন এবং লোকদের কাছে ভাষণ দিতে লাগলেন৷ 22 লোকেরা চিত্কার করতে লাগল, ‘এতো মানুষের কন্ঠস্বর নয়, এ য়ে ঈশ্বরের কন্ঠস্বর!’ 23 হেরোদ এই প্রশংসা কুড়ালেন, ঈশ্বরকে তাঁর প্রাপ্য় গৌরব দিলেন না৷ হঠাত্ প্রভুর এক দূত এসে হেরোদকে আঘাত করলে তিনি অসুস্থ হলেন৷ তাঁর শরীর কীটে খেয়ে ফেলল, ফলে তিনি মারা গেলেন৷ 24 এদিকে ঈশ্বরের বার্তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল আর বহু লোক তাতে বিশ্বাস করল৷ 25 বার্ণবা ও শৌল জেরুশালেমে তাঁদের কাজ সেরে আন্তিয়খিয়ায় ফিরে গেলেন৷ তাঁরা য়োহন, যাকে মার্ক বলে, তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন৷
1 সেই সময় আন্তিয়খিয়ার মণ্ডলীতে কয়েকজন ভাববাদী ও শিক্ষক ছিলেন৷ তাঁরা হলেন; বার্ণবা, শিমোন যাকে নীগের বলা হত, কুরীনীয় শহরের লুকিয়, মনহেম ইনি শাসনকর্তা হেরোদের সঙ্গে মানুষ হয়েছিলেন ও শৌল৷ 2 তাঁরা প্রভুর সেবায় রত ছিলেন ও উপবাস করছিলেন৷ সেই সময় একদিন পবিত্র আত্মা বললেন, ‘বার্ণবা ও শৌলকে আমার জন্য পৃথক করে দাও; কারণ একটি বিশেষ কাজের জন্য আমি তাদের মনোনীত করেছি৷’ 3 তখন তাঁরা উপবাস ও প্রার্থনার পর বার্ণবা ও শৌলের ওপর হাত রেখে তাঁদের বিদায় দিলেন৷ 4 এইভাবে পবিত্র আত্মার প্রেরণায় চালিত হয়ে তাঁরা সিলুকিয়া শহরে গেলেন ও সেখান থেকে জাহাজে করে কুপ্র দ্বীপে রওনা দিলেন৷ 5 তাঁরা সালামী শহরে পৌঁছে ইহুদীদের সমাজ-গৃহগুলিতে গিয়ে ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করলেন৷ য়োহন মার্ক তাঁদের সহকারীরূপে কাজ করছিলেন৷ 6 তাঁরা সেই দ্বীপের মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে পরে পাফোসে এসে উঠলেন৷ সেখানে তাঁরা বর যীশু নামে এক ইহুদী যাদুকর ও ভণ্ড ভাববাদীর দেখা পেলেন৷ 7 সে সেই রাজ্যের রাজ্যপাল সের্গীয় পৌলের উপদেষ্টা ছিল৷ সের্গীয় পৌল ছিলেন একজন বুদ্ধিমান লোক৷ তিনি বার্ণবা ও শৌলকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ঈশ্বরের বার্তা শুনতে চাইলেন৷ 8 কিন্তু সেই যাদুকর ইলুমা৷ এই ছিল বর যীশুর গ্রীক নাম বার্ণবা ও পৌলের বিরুদ্ধাচরণ করে রাজ্যপালকে খ্রীষ্টে বিশ্বাস থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করতে লাগল৷ 9 তখন শৌল যাকে পৌলও বলে, তিনি পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ইলুমার দিকে সোজাসুজি তাকালেন৷ 10 বললেন, ‘তুই ছল-চাতুরীতে ভরা লোক! তুই দিয়াবলের ছেলে! যা কিছু ঠিক, তুই তার শত্রু! তুই কি প্রভুর সত্য পথকে বিকৃত করতে ক্ষান্ত হবি না? 11 দেখ, প্রভুর হাত এখন তোর ওপর৷ তুই অন্ধ হয়ে যাবি, আর কিছু দিন সূর্যের আলো আর দেখতে পাবি না৷’সঙ্গে সঙ্গে এক গভীর অন্ধকার তার ওপর নেমে এল, আর সে চারদিকে হাতড়াতে লাগল, তাকে হাত ধরে সেখান থেকে নিয়ে যাবার জন্য লোকদের অনুরোধ করতে লাগল৷ 12 তখন সেই ঘটনা দেখে রাজ্যপাল বিশ্বাস করলেন, কারণ তিনি প্রভুর বিষয়ে শিক্ষার কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন৷ 13 পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা পাফঃ থেকে জলপথে রওনা দিয়ে পাম্ফুলিয়ার পর্গাতে এলেন; কিন্তু য়োহন তাঁদের ছেড়ে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন৷ 14 তাঁরা পর্গা থেকে আবার যাত্রা শুরু করে পিষিদিয়ার আন্তিয়খিয়ায় এসে উপস্থিত হলেন৷ এক বিশ্রামবারে পৌল ও বার্ণবা ইহুদীদের এক সমাজ-গৃহে গিয়ে বসলেন৷ 15 মোশির বিধি-ব্যবস্থা এবং ভাববাদীদের গ্রন্থ থেকে পাঠ করা হলে পরে সমাজ-গৃহের অধ্যক্ষ তাদের বলে পাঠালেন, ‘ভাইয়েরা, লোকদের কাছে শিক্ষা দেবার ও উত্সাহ য়োগাবার মত যদি আপনাদের কিছু থাকে তবে এগিয়ে এসে তা বলুন৷’ 16 তখন পৌল উঠে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে বলতে থাকলেন, ‘হে ইস্রায়েলী লোকেরা ও অইহুদীরা, আপনারা যাঁরা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করেন তারা আমার কথা শুনুন৷ 17 এই ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষদের মনোনীত করেছিলেন, আর মিশর দেশে প্রবাসীরূপে থাকার সময় তিনি আমাদের লোকদের উন্নত করেছিলেন৷ সেই দেশ থেকে ঈশ্বর মহাপরাক্রমে তাদের বের করে আনলেন৷ 18 প্রায় চল্লিশ বছর ধরে প্রান্তরের মধ্যে ঈশ্বর তাদের সব রকমের ব্যবহার সহ্য করলেন৷ 19 তিনি কনানের সাতটি জাতিকে উচ্ছেদ করে সেইসব জাতির দেশ ইস্রায়েলীয়দের দিলেন৷ 20 এইভাবে প্রায় চারশো পঞ্চাশ বছর কেটে গেল৷‘এরপর ভাববাদী শমূয়েলের সময় পর্যন্ত ঈশ্বর কয়েকজন বিচারক দিলেন; 21 তারপর তারা একজন রাজা চাইলে বিন্যামীন গোষ্ঠীর কীশের ছেলে শৌলকে ঈশ্বর দিলেন,. য়ে চল্লিশ বছর ধরে তাদের ওপর রাজত্ব করল৷ 22 পরে তিনি তাকে সরিয়ে, দাযূদকে তাদের রাজা করলেন৷ ঈশ্বর তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে বললেন, ‘আমি যিশয়ের ছেলে দাযূদকে পেয়েছি, সে আমার মনের মত লোক৷ আমি তাকে যা করতে বলব সে তা করবে৷’ 23 দাযূদের বংশে ঈশ্বর তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ইস্রায়েলের জন্য এক ত্রাণকর্তা আনলেন, তিনি যীশু৷ 24 তাঁর আসার আগে য়োহন সমস্ত ইস্রায়েল জাতির কাছে মন-ফিরানোর এক বাপ্তিস্ম ঘোষণা করলেন৷ 25 য়োহন তাঁর কাজের শেষের দিকে বলতেন, ‘আমি কে, তোমরা কি মনে কর? আমি সেই খ্রীষ্ট নই৷ আমার পর যিনি আসছেন, তাঁর জুতোর ফিতে খোলার য়োগ্যতাও আমার নেই৷ 26 ‘ভাইয়েরা, অব্রাহামের বংশধরেরা, আর অইহুদীদের মধ্যে যাঁরা ঈশ্বরের উপাসনা করেন, আপনারা সকলে জানুন য়ে আমাদেরই কাছে পরিত্রাণের এই বার্তা পাঠানো হয়েছে৷ 27 জেরুশালেমের অধিবাসীরা ও তাদের নেতারা যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসেবে চিনতে পারে নি, যদিও ভাববাদীদের বাক্য যা প্রভু যীশুর সম্বন্ধে বলে তা তাদের কাছেই প্রতি বিশ্রামবারে পাঠ করা হত৷ যিহূদিরাই তাকে দোষী সাব্যস্ত করল, আর এইভাবে তারা ভাববাদীদের বাক্য সফল করেছে৷ 28 মৃত্যুদণ্ড দেবার মতো তাঁর কোন দোষ না পেলেও তারা পীলাতের কাছে তাঁকে হত্যা করার জন্য দাবী জানায়৷ 29 যীশুর বিষয়ে যা কিছু শাস্ত্রে লেখা হয়েছে তার সবকিছু সম্পন্ন করবার পর, তারা তাঁর মৃতদেহ সেই ক্রুশ থেকে নামিয়ে এক কবরে রেখেছিল৷ 30 কিন্তু ঈশ্বর যীশুকে পুনর্জীবিত করলেন৷ 31 যাঁরা তাঁর সঙ্গে গালীল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন, তাদেরকে তিনি অনেক দিন পর্যন্ত দেখা দিয়েছিলেন৷ তারাই এখন লোকদের কাছে সর্বসমক্ষে তাঁর সাক্ষী৷ 32 আমরা আপনাদের কাছে এই সুসমাচার জানাচ্ছি, যা ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষের কাছে প্রতিশ্রুতি স্বরূপ দিয়েছিলেন; 33 যীশুকে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করে ঈশ্বর আমাদের কাছে অর্থাত্ তাঁর সন্তানদের জন্যে সেই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন৷ য়েমন দ্বিতীয় গীতে এ লেখা আছে:‘তুমি আমার পুত্র, আজই আমি তোমার পিতা হয়েছি৷’ গীতসংহিতা 2:7 34 ঈশ্বর যীশুকে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ যীশু আর কখনও ক্ষয় পাবেন না৷ এই বিষয়ে ঈশ্বর বলেছেন:‘আমি দাযূদেব কাছে য়ে পবিত্র ও সত্য প্রতিশ্রুতিগুলি দিয়েছিলাম, তা তোমাকে দেব৷’ যিশাইয় 55:3 35 আবার আর এক জায়গায় ঈশ্বর বলেছেন:‘তুমি তোমার পবিত্রতমকে ক্ষয় দেখতে দেবে না৷’ গীতসংহিতা 16:10 36 দাযূদ তাঁর সময়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযাযী কাজ করার পর মারা গেলে পিতৃপুরুষের কবরের মধ্যে তাঁকেও কবর দেওয়া হল ও তার দেহও ক্ষয় পেল৷ 37 কিন্তু ঈশ্বর যাকে (যীশুকে) মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, তিনি ক্ষয় দেখেন নি৷ 38 তাই ভাইয়েরা, আমি চাই আপনারা জানুন য়ে, এই যীশুর মাধ্যমেই পাপের ক্ষমা লাভের কথা আপনাদের কাছে ঘোষণা করে হচ্ছে৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থায় আপনারা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারতেন না; কিন্তু প্রত্যেক ব্যক্তি য়ে যীশুর ওপর বিশ্বাস করে, সে পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে৷ 39 40 তাই সাবধান! ভাববাদীরা যা বলে গেছেন, তা য়েন আপনাদের জীবনে ফলে না যায়৷ ভাববাদীরা বললেন, 41 ‘শোন, তোমরা যাঁরা উপহাস কর! তোমরা দেখ, অবাক হও ও ধ্বংস হয়ে যাও, কারণ আমি তোমাদের সময়ে এমন কাজ করেছি, য়ে কাজের কথা তোমাদের বলা হলেও তোমরা বিশ্বাস করবে না৷’হবক্কূক 1:5 42 পৌল ও বার্ণবা যখন সমাজ-গৃহ থেকে চলে যাচ্ছেন, তখন লোকেরা অনুরোধ করল য়েন পরের বিশ্রামবারে তারা আরো বিস্তারিতভাবে ঐসব কথা তাদের জানান৷ 43 সমাজ-গৃহের সভা শেষ হলে, অনেক ইহুদী ও ইহুদী ধর্মাবলম্বী ভক্ত লোকেরা পৌল ও বার্ণবার পিছনে পিছনে গেল৷ পৌল ও বার্ণবা ঐসব লোকদের সঙ্গে কথা বললেন ও ঈশ্বরের অনুগ্রহে আস্থা রেখে চলার পরামর্শ দিলেন৷ 44 পরের বিশ্রামবারে সেই শহরের প্রায় সমস্ত লোক প্রভুর কথা শোনার জন্য সমবেত হল; 45 কিন্তু ইহুদীরা অতো লোকের সমাগম দেখে ঈর্ষাতে পূর্ণ হল৷ তারা পৌলের কথার প্রতিবাদ করে তাদের অপমানও করতে লাগল৷ 46 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা নির্ভীকভাবে বলতে থাকলেন, ‘প্রথমে তোমরা যাঁরা ইহুদী তোমাদেরই কাছে ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করার প্রযোজন ছিল; কিন্তু তোমরা যখন তা অগ্রাহ্য় করে নিজেদেরকে অনন্ত জীবনের অয়োগ্য মনে করছ, তখন আমরা অইহুদীদের কাছেই যাব৷ 47 কারণ প্রভু আমাদের এমনই আদেশ করেছেন:‘আমি তোমাদের অইহুদীদের কাছে দীপ্তিস্বরূপ করেছি, য়েন তোমরা জগতের সমস্ত লোকের কাছে পরিত্রাণের পথ জ্ঞাত কর৷’যিশাইয় 49:6 48 অইহুদীরা পৌলের এই কথা শুনে আনন্দিত হল ও প্রভুর বার্তার সম্মান করল৷ আর যাঁরা অনন্ত জীবনের জন্য মনোনীত হয়েছিল, তারা বিশ্বাস করল৷ 49 প্রভুর এই বার্তা সেই অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল৷ 50 এদিকে কিছু ইহুদীরা ভক্তিমতি ও সম্মানীয় মহিলাদের ও শহরের নেতাদের উত্তেজিত করে পৌল ও বার্ণবার প্রতি নির্য়াতন শুরু করল, আর নিজেদের অঞ্চল থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দিল৷ 51 তখন তাঁরা তাদের বিরুদ্ধে পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলে ইকনিয়ে চলে গেলেন৷ 52 এদিকে আন্তিয়কে অনুগামীরা আনন্দে ও পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হতে থাকলেন৷
1 এরপর পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে গেলেন৷ সেখানে তাঁরা তাঁদের কাজের পদ্ধতি অনুযাযী সেই একইভাবে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে প্রবেশ করলেন৷ সেখানকার লোকদের কাছে পৌল ও বার্ণবা এতো সুন্দরভাবে কথা বললেন, য়ে অনেক ইহুদী ও গ্রীক তাঁদের কথায় বিশ্বাস করল৷ 2 কিন্তু কিছু ইহুদীরা বিশ্বাস করল না এবং তারা ভাইদের বিরুদ্ধে অইহুদীদের ক্ষেপিয়ে তুলল৷ 3 পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে অনেক দিন থেকে গেলেন, আর তাঁরা নির্ভীকভাবে প্রভুর কথা বলে য়েতে লাগলেন৷ তাঁরা প্রভুর অনুগ্রহের কথা প্রচার করতেন; আর প্রভুও তাঁদের মাধ্যমে নানা অলৌকিক কাজ করে সেই প্রচারের পক্ষে সাক্ষ্য দিতেন৷ 4 সেই শহরের লোকেরা দুদলে ভাগ হয়ে গেল, একদল ইহুদীদের পক্ষে আর অন্য দল প্রেরিতদের পক্ষ নিল৷ 5 তখন অইহুদীরা ও ইহুদীরা তাদের সমাজপতিদের সঙ্গে এক হয়ে পৌল ও বার্ণবাকে অপমান করে পাথর মেরে হত্যা করার পরিকল্পনা করল৷ 6 শৌল ও বার্ণবা তা জানতে পেরে সেই শহর ছেড়ে গেলেন৷ তাঁরা লুকায়নিয়ার লুস্ত্রা ও দর্বী শহরে ও তার চারপাশের অঞ্চলে চলে গেলেন; 7 আর সেখানেও তাঁরা সুসমাচার প্রচারের কাজ চালিয়ে গেলেন৷ 8 লুস্ত্রায় একজন লোক বসে থাকত, সে তার পা ব্যবহার করতে পারত না৷ সে জন্ম থেকেই খোঁড়া ছিল, কখনও হাঁটা চলা করে নি৷ 9 সেই লোকটি বসে বসে পৌলের কথা শুনছিল৷ পৌল তার দিকে চেয়ে দেখলেন সুস্থ হবার জন্য লোকটির ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস আছে৷ 10 পৌল তখন তাকে ডেকে বললেন, ‘তোমার দু পায়ে ভর দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াও!’ আর সে লাফ দিয়ে উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল৷ 11 পৌল যা করলেন তা দেখে লোকেরা লুকায়নীয় ভাষায় বলে উঠল, ‘দেবতারা মানুষ রূপ ধারণ করে আমাদের মধ্যে অবতীর্ণ হয়েছেন!’ 12 তারা বার্ণবাকে বলল, ‘দ্যুপিতর’আর পৌলকে বলল, ‘মর্কুরিয়,’কারণ পৌল ছিলেন প্রধান বক্তা৷ 13 শহরের ঠিক সামনেই দ্যুপিতের য়ে মন্দির ছিল, তার যাজক কয়েকটা ষাঁড় ও মালা নিয়ে শহরের ফটকে এল ও লোকদের সঙ্গে সেখানে তা বলিদান করে পৌল ও বার্ণবার কাছে উত্সর্গ করতে চাইল৷ 14 কিন্তু প্রেরিত বার্ণবা ও পৌল যখন একথা বুঝলেন, তখন তাঁরা নিজেদের পোশাক ছিঁড়ে দৌড়ে বাইরে গিয়ে লোকদের উদ্দেশ্যে চিত্কার করে বললেন, 15 ‘আহা, তোমরা এ করছ কি? আমরাও তোমাদের মতো সাধারণ মানুষ! আমরা তোমাদের সুসমাচার শোনাতে এসেছি৷ এইসব অসারতার মধ্য থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের দিকে ফিরতে হবে৷ ঈশ্বরই আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সেই সকলের মধ্যে যা কিছু আছে সে সমস্তই সৃষ্টি করেছেন৷ 16 তিনিই অতীতে সমস্ত জাতিকে নিজেদের খুশী মতো পথে চলতে দিয়েছেন৷ 17 তথাপি ঈশ্বর য়ে আছেন এর প্রমাণের জন্য তিনি অনেক কিছু করেছিলেন৷ তিনি সকলের মঙ্গল করেছেন৷ আকাশ থেকে বৃষ্টি ও বিভিন্ন ঋতুতে শস্য দিচ্ছেন৷ তিনি তোমাদের খাদ্য য়োগাচ্ছেন ও তোমাদের অন্তর আনন্দে পূর্ণ করছেন৷’ 18 এইসব কথা পৌল ও বার্ণবা অনেক করে বোঝালেও তাঁদের উদ্দেশ্যে বলিদান করা থেকে কোনভাবেই এই লোকদের রুখতে পারলেন না৷ 19 এই ঘটনার পর ইকনিয় ও আন্তিয়খিয়া থেকে কয়েকজন ইহুদী এসে লোকদের পৌলের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করল৷ তারা পৌলের ওপর পাথর ছুঁড়ল, তাঁকে টেনে এনে শহরের বাইরে নিয়ে গেল৷ তারা মনে করল পৌল বুঝি মারাই গেছেন৷ 20 কিন্তু যীশুর অনুগামীরা এসে তাঁর চারপাশে দাঁড়ালে তিনি উঠে তাদের সঙ্গে শহরে গেলেন৷ পরদিন তিনি বার্ণবার সঙ্গে দর্বীতে চলে গেলেন৷ 21 সেই শহরে তাঁরা সুসমাচার প্রচার করলেন, আর বহুলোক যীশুর অনুগামী হোল৷ এরপর তাঁরা লুস্ত্রা হয়ে ইকনিয় ও পরে আন্তিয়খিয়ায় ফিরে এলেন৷ 22 তাঁরা ঐসব শহরে শিষ্যদের শক্তি জোগালেন৷ সমস্ত নির্য়াতনের মধ্যেও বিশ্বাসে অটল থাকতে তাঁদের সাহস দিয়ে বললেন, ‘অনেক দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে৷’ 23 তাঁরা প্রত্যেকটি বিশ্বাসী মণ্ডলীর জন্য প্রাচীনদের নিযোগ করলেন৷ এই প্রাচীনেরা, যাঁরা প্রভুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন, প্রার্থনা ও উপবাসের সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে তাঁরা প্রভুর হাতে সঁপে দিলেন৷ 24 এরপর তাঁরা পিষিদিয়ার মধ্য দিয়ে পাম্ফুলিয়ায় গেলেন৷ 25 তারপর পর্গায় আবার সুসমাচার প্রচার করলেন ও সেখান থেকে অত্তালিয়ায় চলে গেলেন৷ 26 সেখান থেকে তাঁরা জাহাজে করে আন্তিয়খিয়ায় গেলেন৷ য়ে কাজ তাঁরা এখন শেষ করলেন, সেই কাজের জন্যই এই শহর থেকে বিশ্বাসীরা পৌল ও বার্ণবাকে প্রভুর কাছে সমর্পণ করেছিলেন৷ 27 পৌল বার্ণবা ফিরে এসে মণ্ডলীর বিশ্বাসীদের একত্র করলেন; আর ঈশ্বর তাঁদের সঙ্গে থেকে য়ে সব কাজ করেছিলেন ও অইহুদীদের জন্য বিশ্বাসের য়ে দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন, সে সব কথা তাঁদের জানালেন৷ 28 পরে তাঁরা অনুগামীদের সঙ্গে সেখানে দীর্ঘ সময় থাকলেন৷
1 যিহূদা থেকে কয়েকজন লোক এসে শিক্ষা দিতে লাগল৷ তারা অইহুদী ভাইদের শিক্ষা দিয়ে বলল, ‘মোশির বিধান অনুসারে সুন্নত সংস্কার না করলে তোমরা উদ্ধার পাবে না৷’ 2 পৌল ও বার্ণবা এই শিক্ষার বিরোধিতা করলেন৷ সেই লোকদের সঙ্গে পৌল ও বার্ণবার তর্ক হল৷ ঠিক হল এই তর্কের মীমাংসার জন্য পৌল, বার্ণবা ও আরও কয়েকজনকে জেরুশালেমে প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের কাছে পাঠানো হবে৷ 3 তখন মণ্ডলী তাঁদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন৷ এই বিশ্বাসীরা যাত্রা পথে ফৈনীকিয়া ও শমরিয়া হয়ে গেলেন ও অইহুদীরা য়ে খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হয়েছে তা জানালেন, এতে বিশ্বাসীদের মধ্যে খুবই আনন্দ হল৷ 4 পৌল, বার্ণবা ও অন্যান্যরা জেরুশালেমে পৌঁছালেন৷ বিশ্বাসী মণ্ডলীর প্রেরিতেরা ও প্রাচীনেরা তাঁদের স্বাগত জানালেন৷ ঈশ্বর তাদের সঙ্গে যা করেছেন, পৌল ও বার্ণবা সে সব কথা জানালেন৷ 5 কিন্তু ফরীশীদের মধ্যে যাঁরা বিশ্বাসী হয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগল, ‘অইহুদীদের মধ্যে যাঁরা বিশ্বাসী হয়েছে, তাদের সুন্নত করা ও মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা পালনে বাধ্য করা হবে৷’ 6 এরপর প্রেরিতেরা ও প্রাচীনেরা এই প্রশ্নের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য সমবেত হলেন৷ 7 দীর্ঘক্ষণ ধরে নানা কথা কাটাকাটির পর পিতর উঠে দাঁড়িয়ে তাদের বললেন, ‘ভাইয়েরা আপনারা জানেন, পূর্বের দিনগুলিতে ঈশ্বর আপনাদের মধ্য থেকে আমাকে মনোনীত করেছিলেন, য়েন অইহুদীদের কাছে আমি সুসমাচার প্রচার করি৷ তারা আমার মুখে সুসমাচার শুনে বিশ্বাস করেছিল৷ 8 ঈশ্বর, যিনি আমাদের অন্তর সকল জানেন তিনি অইহুদীদের তাঁর রাজ্যে গ্রহণ করলেন এবং এর সাক্ষ্যস্বরূপ তাদের পবিত্র আত্মা দিলেন, য়েমন আমাদের দিয়েছিলেন৷ 9 তাদের ও আমাদের মধ্যে ঈশ্বর কোন প্রভেদ রাখেন নি, বরং বিশ্বাস করলে পর ঈশ্বর তাদের অন্তরও শুদ্ধ করলেন৷ 10 এখন এই অইহুদী ভাইদের কাঁধে কেন আপনারা ভারী য়োয়াল চাপিয়ে দিতে চাইছেন? ঈশ্বরকে কি আপনারা ক্রুদ্ধ করতে চান? আমরা ও আমাদের পিতৃপুরুষদের এমন শক্তি ছিল না য়ে সেই ভারী য়োয়াল বহন করি৷ 11 কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি য়ে এই অইহুদী বিশ্বাসীরা আমাদের মত প্রভু যীশুর অনুগ্রহেই উদ্ধার লাভ করবে!’ 12 তখন সমস্ত লোক নীরব হয়ে গেল; আর বার্ণবা ও পৌলের মাধ্যমে অইহুদীদের মধ্যে ঈশ্বর কি কি অলৌকিক কাজ করেছেন, তাদের কাছ থেকে সে সব ঘটনার কথা শুনল৷ 13 তাদের কথা বলা শেষ হলে যাকোব বলতে শুরু করলেন, ‘ভায়েরা, আমার কথা শুনুন৷ 14 অইহুদীদের প্রতি ঈশ্বরের ভালোবাসার কথা আপনারা ভাই শিমোনের মুখে শুনেছেন৷ এই প্রথম যখন ঈশ্বর অইহুদীদের গ্রহণ করলেন ও তাদেরকে তাঁর প্রজা করে নিলেন৷ 15 ভাববাদীদের কথাও এর সাথে মেলে য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে: 16 ‘এরপর আমি ফিরে আসব, আর দাযূদের য়ে ঘর ভেঙ্গে গেছে, তা পুনরায় গাঁথব৷ আমি তার ধ্বংস স্থান আবার গেঁথে তুলব, তা নতুন করে স্থাপন করব৷ 17 য়েন মানবজাতির বাকি অংশ প্রভুর অন্বেষণ করে, আর সমস্ত অইহুদীদের যাদেরকে আমার নামে আহ্বান করা হয়েছে, তারাও সকলে প্রভুর অন্বেষণ করে৷ ঈশ্বর একথা বলেন এবং তিনিই এসব করেছেন৷ 18 ঈশ্বর বহুপূর্বেই এই বিষয়গুলি জানিয়েছেন৷ আমোষ 9:11-12 19 ‘তাই আমার বিচার এই য়ে অইহুদীদের মধ্য থেকে যাঁরা ঈশ্বরের দিকে ফিরেছে আমরা তাদের কষ্ট দেব না৷ 20 এর পরিবর্তে আমরা তাদের পত্র লিখে এই কথা জানাবো৷তারা য়েন প্রতিমা সংক্রান্ত কোন অশুচি খাদ্য না খায়, য়ৌন পাপ কার্য় থেকে বিরত থাকে, গলা টিপে মারা কোন প্রাণীর মাংস না খায় বা রক্ত আস্বাদন না করে৷ 21 তাদের এবিষয়ে নিবৃত্ত হওয়া প্রযোজন, কারণ সেই আদিকাল থেকেই প্রতিটি শহরে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে এখনও মোশির এমন লোক আছে, যাঁরা তাঁকে অর্থাত্ তাঁর বিধি-ব্যবস্থার কথা প্রচার করে৷ তাছাড়া প্রতি বিশ্রামবারে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে মোশির বিধি-ব্যবস্থা পাঠ করা হয়৷’ 22 তখন প্রেরিতেরা ও প্রাচীনেরা মণ্ডলীর বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে একয়োগে তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে মনোনীত করে পৌল ও বার্ণবার সঙ্গে আন্তিয়খিয়ায় পাঠাবার বিষয়ে ঠিক করলেন৷ তাঁরা যিহূদা, বার্ণবা ও সীলকে মনোনীত করলেন, এরা ভাইদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ছিলেন৷ 23 তাদের সঙ্গে তারা এইরকম এক পত্র লিখে পাঠালেন: আন্তিয়খিয়ায়, সুরিয়া ও কিলিকিয়ার অইহুদী সমবিশ্বাসী ভাইদের কাছে প্রেরিতদের ও মণ্ডলীর প্রাচীনদের শুভেচ্ছা৷প্রিয় ভাইয়েরা, 24 আমরা শুনতে পেয়েছি য়ে আমাদের নির্দেশ ছাড়াই এমন কয়েকজন লোক এখান থেকে গিয়ে নানা কথা বলে তোমাদের মন অস্থির করে তুলেছে ও তোমাদের নানা সমস্যার মধ্যে ফেলেছে! 25 আমরা সকলে একমত হয়েছি য়ে কয়েকজন মনোনীত করে আমাদের প্রিয় ভাই বার্ণবা ও পৌলের সঙ্গে তোমাদের কাছে পাঠান৷ 26 এই লোকেরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে নিজেদের জীবন উত্সর্গ করেছেন৷ 27 তাই এদের সঙ্গে আমরা যিহূদা ও শীলকে পাঠাচ্ছি, এঁরা তোমাদের একই কথা বলবেন৷ 28 কারণ পবিত্র আত্মার কাছে এবং আমাদের কাছেও এটাই ভাল মনে হল য়ে এই প্রযোজনীয় বিষয়গুলি ছাড়া অতিরিক্ত কোন কিছুই তোমাদের ওপর ভারস্বরূপ চাপিয়ে দেব না৷ 29 তোমরা প্রতিমার সামনে উত্সর্গ করা কোন খাদ্যবস্তু খাবে না, রক্ত এবং গলা টিপে মারা কোন প্রাণীর মাংস খাবে না, আর য়ৌন পাপ কর্ম থেকে দূরে থাকবে৷তোমরা যদি নিজেদের এর থেকে দূরে রাখ তাহলে তোমাদের মঙ্গল হবে৷ তোমাদের সকলের জন্য আমাদের শুভেচ্ছা রইল৷ 30 তাই পৌল, বার্ণবা, যিহূদা ও সীল জেরুশালেম থেকে রওনা হয়ে আন্তিয়খিয়ায় এলেন৷ তাঁরা লোকদের সমবেত করে সেই চিঠিটি দিলেন৷ 31 চিঠিটি পড়ার পর তারা সবাই সেই উত্সাহোদ্দীপক চিঠির জন্য আনন্দ করতে থাকলেন৷ 32 যিহূদা ও সীল উভয়ে ভাববাদী হওয়াতে ভাইদের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে তাদের উত্সাহ দিলেন ও শক্তি জোগালেন৷ 33 যিহূদা ও সীল কিছুদিন সেখানে থাকার পর যাঁরা তাদের পাঠিয়েছিলেন, তাদের কাছে অর্থাত্ জেরুশালেমে ফিরে যাবার জন্য ভাইদের কাছ থেকে শান্তিতে বিদায় পেলেন৷ 34 35 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা আন্তিয়খিয়াতে কিছু সময় কাটালেন৷ তারা অন্যান্য আরো অনেকের সঙ্গে প্রভুর বার্তা শিক্ষা দিতেন ও সুসমাচার প্রচার করতেন৷ 36 কিছু সময় পর পৌল বার্ণবাকে বললেন, ‘চল আমরা ফিরে যাই, প্রতিটি শহরে য়েখানে আমরা প্রভুর বার্তা প্রচার করেছিলাম, সেইসব জায়গায় গিয়ে দেখি ভাইরা কেমন আছে৷’ 37 বার্ণবা চাইলেন য়েন য়োহন অর্থাত্ মার্কও তাঁদের সঙ্গে যান৷ 38 কিন্তু পৌল ভাবলেন, একবার য়ে পাম্ফুলিয়াতে তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তাকে সঙ্গে না নেওয়াই ভাল৷ 39 এর ফলে তাঁদেব মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল, শেষ পর্যন্ত তাঁরা পরস্পর আলাদা হয়ে গেলেন৷ বার্ণবা মার্ককে সঙ্গে নিয়ে জাহাজে করে কুপ্রের দিকে রওনা দিলেন৷ 40 পৌল সীলকে সঙ্গে নিলেন৷ ভাইরা আন্তিয়খিয়াকে প্রভুর সেবার ভার পৌলকে দিলেন৷ 41 পৌল ও সীল সুরিয়া ও কিলিকিয়ার মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে বিভিন্ন মণ্ডলীকে আরও সুদৃঢ় করলেন৷
1 পৌল, দর্বী ও লুস্ত্রার শহরে গেলেন; সেখানে তীমথিয় নামে একজন খ্রীষ্টানুসারী ছিলেন৷ তীমথিয়র মা ছিলেন ইহুদী খ্রীষ্টীয়ান, তাঁর বাবা ছিলেন গ্রীক৷ 2 লুস্ত্রা ও ইকনীয়ের সকল ভাইয়েরা তীমথিয়কে শ্রদ্ধা করত ও তাঁর বিষয়ে সুখ্যাতি করত৷ 3 পৌল চাইলেন সুসমাচার প্রচারের জন্য য়েন তীমথিয় তাঁর সঙ্গে যান৷ তাই তিনি ঐসব জায়গায় ইহুদীদের সন্তুষ্ট করতে তীমথিয়কে সুন্নত করালেন, কারণ তাঁর বাবা য়ে গ্রীক একথা সকলে জানত৷ 4 পরে পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা বিভিন্ন শহরের মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে, সেখানকার বিশ্বাসী ভাইদের কাছে জেরুশালেমের প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের নির্ধারিত নির্দেশ জানালেন৷ 5 এইভাবে মণ্ডলীগুলি বিশ্বাসে দৃঢ় হতে থাকল ও প্রতিদিন সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকল৷ 6 পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা ফরুগিয়া ও গালাতিয়ায় গেলেন, কারণ এশিয়ায় সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে পবিত্র আত্মা তাঁদের অনুমতি দিলেন না৷ 7 তাঁরা মুশিয়ার সীমান্তে এলেন এবং বিথুনিয়ায় য়েতে চেষ্টা করলেন, কিন্তু যীশুর আত্মা তাদের সেখানেও য়েতে দিলেন না৷ 8 তাই তাঁরা মুশিয়ার মধ্য দিয়ে ত্রোয়াতে গিয়ে পৌঁছালেন৷ 9 সেই রাত্রে পৌল এক দর্শন পেলেন, তিনি দেখলেন একজন মাকিদনিয়ান লোক দাঁড়িয়ে অনুনয় করে বলছে, ‘মাকিদনিয়ায় আসুন! আমাদের সাহায্য করুন৷’ 10 পৌলের এই দর্শন পাওয়ার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে মাকিদনিয়ায় যাওয়ার স্থির করলাম, আমরা বুঝতে পারলাম য়ে সেখানে সুসমাচার প্রচার করার জন্য ঈশ্বর আমাদের ডাকছেন৷ 11 আমরা ত্রোয়া ছেড়ে জলপথে সোজা সামথ্রাকীতের দিকে রওনা দিলাম, আর পরদিন নিয়াপলিতে পৌঁছালাম৷ 12 সেখান থেকে আমরা ফিলিপীতে গেলাম৷ ফিলিপী হল মাকিদনিয়ার এ অংশের এক উল্লেখয়োগ্য শহর, এক রোমান উপনিবেশ, আমরা সেখানে কিছুদিন থাকলাম৷ 13 বিশ্রামবারে আমরা শহরের ফটকের বাইরে নদীর ধারে গেলাম, মনে করলাম সেখানে নিশ্চয়ই কোন প্রার্থনার জায়গা আছে৷ আর সেখানে য়ে সব স্ত্রীলোক সমবেত হয়েছিলেন, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলাম৷ 14 সেখানে লুদিয়া নামে এক মহিলা ছিলেন, তাঁর বেগুনে রঙের কাপড়ের ব্যবসা ছিল৷ থুয়াতীরা শহর থেকে আগত এই মহিলা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করতেন৷ তিনি আমাদের কথা শুনছিলেন, আর ঈশ্বর তাঁর হৃদয় খুলে দিলে তিনি পৌলের কথা মন দিয়ে শুনে বিশ্বাস করলেন৷ 15 তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে বাপ্তাইজ হলে পর, তিনি অনুরোধের সুরে আমাদের বললেন, ‘আপনারা যদি আমাকে প্রভুর প্রকৃত বিশ্বাসী মনে করে থাকেন, তবে আমার বাড়িতে এসে থাকুন৷’ আর তাঁর বাড়িতে থাকবার জন্য আমাদের অনেক পীরাপীড়ি করলেন৷ 16 একদিন আমরা যখন প্রার্থনা করার জন্য যাচ্ছিলাম, তখন একজন ক্রীতদাসী আমাদের সামনে এল৷ তার উপর এমন এক বিশেষ মন্দ আত্মা ভর করে ছিল যার প্রভাবে সে মানুষের ভবিষ্যত্ বলে দিতে পারত৷ এই করে সে তার মনিবদেব বেশ রোজগারের রাস্তা করে দিয়েছিল৷ 17 সে আমাদেরও পৌলের পিছু ধরল আর চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘এই লোকেরা পরাত্পর ঈশ্বরের দাস৷ তাঁরা বলছেন কিভাবে তোমরা উদ্ধার পেতে পারো৷’ 18 এভাবে সে অনেকদিন ধরে বলতে লাগল৷ শেষে পৌল এতে বিরক্ত হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই আত্মাকে বললেন ‘যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোকে আদেশ করছি য়ে তুই এর থেকে বেরিয়ে যা৷’ তাতে সেই মন্দ আত্মা সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে গেল৷ 19 সেই ক্রীতদাসীর মনিবরা তা দেখল, আর সেই ক্রীতদাসীকে কাজে লাগিয়ে তাদের অর্থ উপার্জনের পথ বন্ধ হল বুঝতে পেরে তারা পৌল ও সীলকে ধরে টানতে টানতে বাজারে কর্ত্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে গেল৷ 20 তারা নগরের কর্ত্তৃপক্ষের সামনে পৌল ঔ সীলকে নিয়ে এসে বলল, ‘এরা ইহুদী, আর এরা আমাদের শহরে গণ্ডগোলের সৃষ্টি করছে! 21 এরা এমন সব রীতি নীতি পালনের কথা বলছে যা পালন করা আমাদের পক্ষে নীতিবিরুদ্ধ কাজ, কারণ আমরা রোমান নাগরিক৷ আমরা ঐসব পালন করতে পারি না৷’ 22 তখন সেই জনতা তাঁদের ওপর মারমুখী হয়ে উঠল৷ নগররক্ষকগণ পৌল ও সীলের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে তাঁদের বেত মারার জন্য হুকুম দিলেন৷ 23 পৌল ও সীলকে জনতা খুব মারধোর করার পর নেতারা তাঁদের কারাগারে পুরে দিল এবং কারারক্ষককে কড়া পাহারা দিতে বলল৷ 24 কারারক্ষক এই নির্দেশ পেয়ে পৌল ও সীলকে কারাগারের ভেতরের কক্ষে নিয়ে গিয়ে দেওয়ালে বসানো কাঠের বেড়িগুলির মধ্যে তাঁদের পা আটকে দিল৷ 25 মাঝরাতে পৌল ও সীল ঈশ্বরের স্তবগান ও প্রার্থনা করছিলেন, অন্য বন্দীরা তা শুনছিল৷ 26 হঠাত্ প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কারাগারের ভিত কেঁপে উঠল আর সঙ্গে সঙ্গে কারাগারের সব দরজা খুলে গেল, বন্দীদের শেকল খসে পড়ল৷ 27 কারারক্ষক জেগে উঠে যখন দেখলেন য়ে কারাগারের সব দরজা খোলা তখন তিনি তাঁর তরবারি কোষ থেকে বের করে আত্মহত্যা করতে চাইলেন, কারণ তিনি ভাবলেন বন্দীরা সব পালিয়েছে৷ 28 কিন্তু পৌল চিত্কার করে বলে উঠলেন, ‘নিজের ক্ষতি করবেন না, আমরা সকলেই এখানে আছি৷’ 29 তখন কারারক্ষক কাউকে আলো আনতে বলে ভেতরে দৌড়ে গেলেন, আর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে পৌল ও সীলের সামনে উপুড় হয়ে পড়লেন৷ 30 পরে তাঁদের বাইরে নিয়ে এসে বললেন, ‘মহাশয়েরা, উদ্ধার পেতে হলে আমায় কি করতে হবে?’ 31 তাঁরা বললেন, ‘প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করুন, তাহলে আপনি ও আপনার গৃহের সকলেই উদ্ধার লাভ করবেন৷’ 32 এরপর তাঁরা সেই কারারক্ষক ও তাঁর বাড়ির লোকের কাছে প্রভুর বার্তা প্রচার করলেন৷ 33 বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল কিন্তু কারারক্ষক সেই রাতেই পৌল ঔ সীলের সমস্ত ক্ষত ধুয়ে দিলেন এবং সপরিবারে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করলেন৷ 34 এরপর কারারক্ষক পৌল ও সীলকে নিজের গৃহে নিয়ে গিয়ে তাঁদের আহারের ব্যবস্থা করলেন৷ ঈশ্বরে বিশ্বাসী হওয়ায় তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে খুব আনন্দিত হলেন৷ 35 পরদিন সকাল হলে শাসকগণ রক্ষীবাহিনীদের দিয়ে কারারক্ষককে বলে পাঠালেন, ‘ঐ লোকদের ছেড়ে দাও!’ 36 তখন কারারক্ষক সেকথা পৌলকে জানালেন, ‘নগর অধ্যক্ষেরা আপনাদের ছেড়ে দেবার জন্য বলে পাঠিয়েছেন, তাই এখন আপনারা শান্তিতে এখান থেকে চলে যান৷’ 37 কিন্তু পৌল তাদের বললেন, ‘আমরা রোমান নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তারা আমাদের বিচার না করেই সকলের সামনে বেত মেরেছেন৷ শেষে আমাদের কারাগারে বন্দী করেছিলেন৷ এখন তারা চুপি-চুপি আমাদের ছেড়ে দিতে চাইছেন? এ হতে পারে না! কিন্তু তাদের এখানে আসতে হবে আর এসে আমাদের কারাগারের বাইরে নিয়ে য়েতে হবে৷’ 38 সেই রক্ষীবাহিনীর লোকেরা বিচারকদের জানাল য়ে পৌল ও সীল রোমান নাগরিক, তখন তারা ভয় পেয়ে গেল৷ 39 তাই তারা এসে ক্ষমা চাইল, আর তাঁদের কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে সেই শহর ছেড়ে চলে যাবার জন্য অনুরোধ করল৷ 40 পৌল ও সীল কারাগার থেকে বের হয়ে লুদিয়ার বাড়ি গেলেন৷ সেখানে বিশ্বাসীদের সঙ্গে দেখা হলে তাদের সকলকে উত্সাহ দিলেন৷ এরপর পৌল ও সীল শহর ছেড়ে চলে গেলেন৷
1 এরপর তারা আম্ফিপলি ও অপল্লোনিয়ার ভেতর দিয়ে থিসলনীকীতে এলেন৷ এখানে ইহুদীদের একটি সমাজ-গৃহ ছিল৷ 2 পৌল তাঁর রীতি অনুযায়ী ইহুদীদের দেখার জন্য একটি সমাজ-গৃহে গেলেন৷ তিনটি বিশ্রামবারে তিনি তাদের সঙ্গে শাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করলেন৷ 3 ইহুদীদের কাছে শাস্ত্র ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিলেন য়ে খ্রীষ্টের দুঃখভোগ করা ও মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের প্রযোজন ছিল৷ পৌল বললেন, ‘এই য়ে যীশুকে আমি তোমাদের কাছে প্রচার করছি, ইনিই খ্রীষ্ট৷’ 4 তাদের মধ্যে কেউ কেউ এতে সম্মতি জানাল এবং পৌল ও সীলের সঙ্গে য়োগ দিল৷ এদের মধ্যে অনেক ঈশ্বরভক্ত গ্রীক ছিল যাঁরা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করত, ও কিছু গন্য-মান্য মহিলাও ছিলেন৷ 5 কিন্তু ইহুদীদের মনে ঈর্ষা জাগল৷ তারা কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোককে বাজার থেকে জোগাড় করল; আর এইভাবে একটা দল তৈরী করে শহরে গণ্ডগোল বাধিয়ে দিল৷ তারা লোকসমক্ষে পৌল ও সীলকে দাঁড় করানোর জন্য যাসোনের বাড়িতে চড়াও হয়ে সেখানে তাঁদের খুঁজতে লাগল৷ 6 কিন্তু সেখানে তাঁদের না পেয়ে তারা যাসোন ও অন্য কয়েকজন ভাইকে ধরে টানতে টানতে শহরের শাসনকর্তাদের কাছে নিয়ে গেল৷ তারপর তারা চিত্কার করে বলল, ‘এই য়ে লোকেরা সারা জগতে গোলমাল পাকিয়ে বেড়াচ্ছে; এরা এখন এখানে এসেছে! 7 আর যাসোন কিনা তাদের নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছে৷ এরা সকলে কৈসরের আইনের বিরোধিতা করে, এরা বলে বেড়াচ্ছে য়ে যীশু বলে আর একজন রাজা আছে৷’ 8 এই কথা শুনে সমবেত জনতা ও কর্ত্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন হল৷ 9 তারা যাসোন ও বাকী আর সকলের জরিমানা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিল৷ 10 সেই রাতেই ভাইয়েরা পৌল ও সীলকে বিরয়াতে পাঠিয়ে দিল৷ সেখানে পৌঁছে তাঁরা ইহুদীদের সমাজ-গৃহে গেলেন৷ 11 থিষলনীকীয় লোকদের থেকে এই লোকেরা আরো উদার মনোভাবাপন্ন ছিল৷ এরা আগ্রহের সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য শুনল৷ পৌল সীলের বক্তব্যের বিষয় সত্য কিনা তা মিলিয়ে দেখার জন্য তারা প্রতিদিন শাস্ত্রের মধ্যে অনুসন্ধান করতে লাগল৷ 12 এর ফলে ইহুদীদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করল, এদের মধ্যে কয়েকজন সম্ভ্রান্ত গ্রীক মহিলা ও বহু পুরুষও ছিল৷ 13 থিষলনীকীয় ইহুদীরা যখন শুনতে পেল য়ে পৌল বিরয়াতে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করছেন, তখন তারা সেখানে এসে লোকদের ক্ষেপিয়ে তুলল৷ 14 তখন সেখানকার ভাইরা তাড়াতাড়ি করে পৌলকে সমুদ্রতীরে পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু সীল ও তীমথিয় বিরয়াতে রয়ে গেলেন৷ 15 পৌলকে সঙ্গে নিয়ে যাঁরা গিয়েছিলেন তাঁরা আথীনী পর্যন্ত গেলেন৷ সীল ও তীমথিয়র উদ্দেশ্যে এক বার্তা নিয়ে ভাইরা বিরয়াতে ফিরে এলেন৷ বার্তাতে বলা ছিল, ‘যত শিগ্গির সন্ভব তোমরা আমার কাছে চলে এস৷’ 16 তীমথীয় ও সীলের জন্য পৌল যখন আথীনীতে অপেক্ষা করছিলেন, তখন সেই শহরের সব জায়গায় নানা দেব-দেবীর মূর্তি দেখে অন্তর আত্মায় তিনি খুবই ব্যথিত হয়ে উঠলেন৷ 17 তাই তিনি সমাজ-গৃহে গিয়ে ইহুদী ও ভক্ত গ্রীকদের সঙ্গে ও হাটে বাজারে লোকদের কাছে প্রতিদিন ধর্মালোচনা করতেন৷ 18 ইপিকূরের ও স্তোযিকীর দার্শনিক সম্প্রদায়ের মধ্যে কয়েকজন তাঁর সঙ্গে তর্কবিতর্ক করতে লাগল৷কেউ কেউ বলল, ‘এই সবজান্তা কি বলতে চায়?’ আবার কেউ কেউ বলল, ‘এ দেখছি বিদেশী দেবতাদের বিষয়ে প্রচার করছে৷’ কারণ পৌল সুসমাচার এবং যীশু ও তাঁর পুনরুত্থানের বিষয় বলছিলেন৷ 19 তারা পৌলকে আরেয়পাগের সভায় নিয়ে গিয়ে বলল, ‘আপনি এই য়ে নতুন বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন, এটা কি? আমরা কি তা জানতে পারি? 20 আপনি কিছু অদ্ভুত কথা শোনাচ্ছেন, তাই আমাদের জানতে ইচ্ছা হয়, এসবের অর্থ কি?’ 21 আথীনীয় লোকেরা ও সেখানে বসবাসকারী বিদেশীরা সব সময় কেবল নিত্য-নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সময় কাটাত৷ 22 তখন পৌল আরেয়পাগের সভার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে থাকলেন, ‘হে আথীনীয় লোকেরা, আপনারা দেখছি সমস্ত ব্যাপারেই খুব ধর্মপ্রবণ৷ 23 কারণ আমি বেড়াতে বেড়াতে আপনারা যাদের উপাসনা করেন সেগুলি লক্ষ্য করতে করতে একটা বেদী দেখলাম, যার গায়ে লেখা আছে, ‘অজানা দেবতার উদ্দেশ্যে!’ তাই য়ে অজানা দেবতার আপনারা উপাসনা করছেন তাঁকেই আমি আপনাদের কাছে উপস্থিত করছি৷ 24 ঈশ্বর, যিনি এই জগত ও তার মধ্যেকার সমস্ত কিছুর নির্মাণকর্তা, তিনিই স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, তিনি মানুষের হাতে তৈরী মন্দিরে বাস করেন না৷ 25 মানুষের হাতের সেবা কার্য়ের প্রযোজন তাঁর নেই৷ তাঁর তো কোন কিছুরই অভাব নেই৷ তিনিই সকলকে জীবন, শ্বাস ও যা কিছু প্রযোজন তা দিচ্ছেন৷ 26 শুরুতে ঈশ্বর একটি মানুষকে সৃষ্টি করে সেই একজন মানুষ থেকেই মানবজাতির সৃষ্টি করেছেন, আর গোটা পৃথিবীটা তাদের বসবাসের জন্য দিয়েছেন৷ তিনি নির্ধারণ করে রেখেছেন কোথায় ও কখন তারা থাকবে৷ 27 ঈশ্বর চেয়েছিলেন য়েন মানুষ তাঁর অন্বেষণ করে৷ তাঁর খোঁজ করতে করতে তারা য়েন শেষ পর্যন্ত তাঁর নাগাল পায়৷ অথচ তিনি আমাদের কারো কাছ থেকে তো দূরে নন, 28 ‘কারণ তাঁর মধ্যেই আমাদের জীবন, গতি ও সত্ত্বা৷’আবার আপনাদের কোন কোন কবিও একথা বলেছেন: ‘কারণ আমরা তাঁর সন্তান৷’ 29 তাহলে আমরা যখন ঈশ্বরের সন্তান, তখন ঈশ্বরকে মানুষের শিল্পকলা যা কল্পনা অনুসারে সোনা, রূপো বা পাথরের তৈরী কোন মূর্তির সঙ্গে তুলনা করা আমাদের উচিত নয়৷ 30 মানুষের এই অজ্ঞতার সময়কে ঈশ্বর ক্ষমার চোখে দেখেছেন, কিন্তু এখন সব জায়গায় সকল মানুষকে তিনি এর জন্য মন-ফেরাতে বলছেন৷ 31 কারণ তিনি একটি দিন স্থির করেছেন, য়ে দিনে তিনি তাঁর নিরূপিত একজনকে দিয়ে সারা জগত সংসারের বিচার করবেন৷ এই বিষয়ে সকলে য়েন বিশ্বাস করতে পারে এমন প্রমাণও তিনি দিয়েছেন: এই প্রমাণস্বরূপ তিনি মৃতদের মধ্য থেকে তাঁকে পুনরত্থিত করেছেন!’ 32 মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের কথা শুনে তাদের মধ্যে কয়েকজন উপহাস করতে লাগল, কিন্তু অন্যরা বলল, ‘আমরা এ বিষয়ে আর একদিন আপনার কাছ থেকে শুনব!’ 33 এরপর পৌল তাদের কাছ থেকে চলে গেলেন৷ 34 তাদের মধ্যে কয়েকজন বিশ্বাস করল ও পৌলের সঙ্গ নিল৷ এদের মধ্যে আরেয়পাগীয়েরসভ্য দিয়নুষিয়, দামারী নামে এক মহিলা ও আরো কয়েকজন ছিলেন৷
1 এরপর পৌল আথীনী ছেড়ে করিন্থে এলেন৷ 2 সেখানে আক্কিলা নামে এক ইহুদীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়, তিনি ছিলেন পন্ত দেশের লোক৷ সম্প্রতি তিনি তাঁর স্ত্রী প্রিষ্কিল্লাকে নিয়ে ইতালী থেকে এসেছিলেন, কারণ ক্লৌদিয় সমস্ত ইহুদীকে রোম ছেড়ে যাবার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ পৌল তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন৷ 3 তাঁরা তাঁবু নির্মাণ করতেন য়েমন পৌলও করতেন৷ এইজন্য তিনি তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে লাগলেন৷ 4 প্রতি বিশ্রামবারে পৌল সমাজ-গৃহে ইহুদী ও গ্রীকদের সঙ্গে কথা বলতেন৷ পৌল চেষ্টা করতেন য়েন এইসব লোকেরা যীশুতে বিশ্বাসী হয়৷ 5 সীল ও তীমথিয় যখন মাকিদনিয়া থেকে করিন্থে এলেন, তখন পৌল সুসমাচার প্রচারের জন্য তাঁর সমস্ত সময় দিলেন৷ যীশুই য়ে ঈশ্বরের খ্রীষ্ট এই প্রমাণ তিনি ইহুদীদের দিচ্ছিলেন৷ 6 কিন্তু ইহুদীরা পৌলের শিক্ষার বিরোধিতা করে তাঁকে গালাগাল দিতে লাগল৷ তখন তিনি তাঁর পোশাকের ধুলো ঝেড়ে তাদের বললেন, ‘তোমাদের যদি উদ্ধার না হয় তার জন্য তোমরা দাযী৷ আমি দায়মুক্ত! এরপর আমি অইহুদীদের কাছে যাব!’ 7 পৌল সেখান থেকে চলে গিয়ে সমাজ-গৃহের পাশে তিতিয় যুষ্ট নামে এক ঈশ্বরভক্ত অইহুদীর বাড়িতে উঠলেন; ইনি সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করতেন৷ 8 সমাজ-গৃহের পরিচালক ক্রীষ্প ও তাঁর পরিবারের সকলে প্রভু যীশুতে বিশ্বাসী হল৷ করিন্থের আরো অনেকে পৌলের কথা শুনল, বিশ্বাস করল ও বাপ্তিস্ম নিল৷ 9 এক রাতে এক দর্শনে প্রভু পৌলকে বললেন, ‘ভয় পেযো না! কিন্তু কথা বলে যাও, চুপ করে থেকো না! 10 আমি তোমার সঙ্গে আছি; কেউ তোমার ক্ষতি করতে পারবে না, কারণ এই শহরে আমার লোকেরা আছে৷’ 11 তাই পৌল সেখানে থেকে দেড় বছর ধরে তাদের ঈশ্বরের বাণী শিক্ষা দিলেন৷ 12 গাল্লিযো যখন আখায়ার রাজ্যপাল ছিলেন, তখন ইহুদীদের কিছু লোক জোট পাকিয়ে পৌলের বিরুদ্ধে দাঁড়াল৷ তারা পৌলকে বিচারালয়ে নিয়ে হাজির করল৷ 13 এই ইহুদীরা গাল্লিযোকে বলল, ‘এই লোকটি আমাদের বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অন্য এক পদ্ধতিতে ঈশ্বরের উপাসনা করতে শিক্ষা দিচ্ছে!’ 14 পৌল সেই সময় যখন কিছু বলতে যাচ্ছেন, তখন গাল্লিযো ইহুদীদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘হে ইহুদীরা শোন! এ যদি কোন অপরাধ বা মারাত্মক রকম অন্যায় কোন কাজ করত তবে তোমাদের কথা শোনা আমার পক্ষে যুক্তিযুক্ত হত৷ 15 কিন্তু তোমরা যখন কোন ব্যক্তির নাম, তার বাণী বা তোমাদের বিধি-ব্যবস্থার বিষয়ে বিচারের প্রশ্ন তুলছ, তখন তোমরাই এর বিচার কর, আমি ওসব বিষয়ের বিচারকর্তা হতে চাই না!’ 16 এই বলে তিনি তাদের সকলকে বিচারালয় থেকে য়েতে বললেন৷ 17 তখন তারা সমাজ-গৃহে পরিচালক সোস্থিনীকে ধরে বিচারালয়ের সামনে প্রচণ্ড মারল; কিন্তু গাল্লিযো সে বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ করলেন না৷ 18 পৌল সেই শহরে আরো কিছুদিন থাকার পর ভাইদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সমুদ্র পথে সুরিয়ার দিকে রওনা দিলেন৷ তাঁর সঙ্গে আক্কিলা ও প্রিষ্কিল্লাও ছিল৷ এক মানত পুরণ করতে পৌল কিংক্রিয়াতে এসে মাথা কামিয়ে ফেললেন৷ 19 সেখান থেকে তাঁরা ইফিষে পৌঁছালেন, প্রিষ্কিল্লা ও আক্কিলাকে সেখানে রেখে পৌল সমাজ-গৃহে গেলেন; আর ইহুদীদের সঙ্গে শাস্ত্র আলোচনা করতে লাগলেন৷ 20 তারা সেখানে তাঁকে আরো কিছুদিন থাকার জন্য অনুরোধ করল বটে কিন্তু তিনি তাতে রাজী হলেন না৷ 21 সেখান থেকে যাবার সময় তিনি তাদের বললেন, ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে আমি আবার তোমাদের কাছে আসব৷’ এরপর তিনি ইফিষ থেকে সমুদ্র যাত্রা করলেন৷ 22 তিনি কৈসরিয়া শহরে পৌঁছলেন৷ এরপর জেরুশালেমে সকলের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে শুভেচ্ছা জানাবার পর পৌল সেখান থেকে আন্তিয়খিয়া শহরে গেলেন৷ 23 আন্তিয়খিয়ায় পৌল কিছু সময় থাকলেন, তারপর আন্তিয়খিয়া ছেড়ে গালাতিয়া ও ফরুগিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করে সেইসব স্থানের অনুগামীদের নতুন শক্তি জাগিয়ে তুললেন৷ 24 আপল্লো নামে একজন ইহুদী ইফিষে এলেন, ইনি আলেকসান্দ্রীয় নগরে জন্মেছিলেন৷ তিনি শিক্ষিত মানুষ ছিলেন এবং শাস্ত্র খুব ভাল করে জানতেন৷ 25 আপল্লো প্রভুর পথের বিষয়ে শিক্ষা পেয়েছিলেন৷ তিনি আত্মার আবেগে কথা বলতেন এবং যীশুর বিষয়ে নির্ভুলভাবে শিক্ষা দিতেন, কিন্তু তিনি কেবল য়োহনের বাপ্তিস্মের বিষয়েই জানতেন৷ 26 আপল্লো যখন সমাজ-গৃহে নির্ভীকভাবে প্রচার করছিলেন, সেই সময় প্রিষ্কিল্লা ও আক্কিলা তাঁর কথা শুনে তাঁকে একান্তে ডেকে নিয়ে গিয়ে ঈশ্বরের পথের বিষয়ে আরো নিখুঁতভাবে বুঝিয়ে দিলেন৷ 27 আপল্লো আখায়াতে য়েতে চাইলে খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাইরা তাঁকে সে বিষয়ে উত্সাহ দিলেন৷ তাঁরা আখায়ার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের চিঠি লিখে দিলেন য়েন তাঁরা আপল্লোকে সাদরে গ্রহণ করেন৷ তিনি সেখানে পৌঁছালে যাঁরা অনুগ্রহের মাধ্যমে বিশ্বাসী হয়েছিল, আপল্লো তাদের অনেককে সাহায্য করলেন৷ 28 তিনি প্রকাশ্য বিতর্ক সভায় দৃঢ়তার সঙ্গে ইহুদীদের হারিয়ে দিলেন এবং শাস্ত্র থেকে প্রমাণ করলেন য়ে, যীশুই হলেন সেই খ্রীষ্ট৷
1 আপল্লো যখন করিন্থে ছিলেন তখন পৌল সেই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে ইফিষে এসে পৌঁছলেন৷ সেখানে তিনি য়োহন বাপ্তাইজকের কয়েকজন অনুগামীর দেখা পেলেন৷ 2 তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা যখন বিশ্বাসী হও, তখন কি পবিত্র আত্মা পেয়েছিলে?’তারা তাঁকে বলল, ‘কই? পবিত্র আত্মা বলে য়ে কিছু আছে এমন কথা তো আমরা কখনও শুনি নি!’ 3 তিনি তাদের বললেন, ‘তবে তোমাদের কি ধরণের বাপ্তিস্ম হয়েছিল?’তারা বলল, ‘য়োহন য়ে ধরণের বাপ্তিস্ম দিতেন৷’ 4 পৌল বললেন, ‘য়োহন মন-ফেরানোর জন্য লোকদের বাপ্তাইজ করতেন৷ তিনি তাদের বলতেন, তাঁর পরে যিনি আসছেন, তাঁর ওপর অর্থাত যীশুর ওপর বিশ্বাস কর৷’ 5 তারা একথা শুনে প্রভু যীশুর নামে বাপ্তাইজ হল৷ 6 এরপর পৌল তাদের ওপর হাত রাখলে, তাদের ওপর পবিত্র আত্মা নেমে এলেন৷ তারা নানা ভাষায় কথা বলতে ও ভাববাণী বলতে শুরু করল৷ 7 তারা মোট বারো জন পুরুষ ছিল৷ 8 এরপর পৌল সমাজ-গৃহে গেলেন, আর সেখানে তিন মাস ধরে নির্ভীকভাবে কথা বললেন এবং যুক্তিসহ ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বুঝিয়ে দিলেন৷ 9 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন তাঁর কথা মানতে চাইল না৷ তারা প্রকাশ্যে খ্রীষ্টের পথের বিরুদ্ধে নিন্দা করতে লাগল৷ তখন পৌল তাদের ছেড়ে চলে গেলেন, যীশুর অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে গেলেন৷ পরে প্রতিদিন তুরাণের ভাষণ কক্ষে পৌল তাদের নিয়ে শাস্ত্র আলোচনা করতে লাগলেন৷ 10 এইভাবে দুবছর কেটে গেল, এর ফলে এশিয়ায় যাঁরা বাস করত, কি ইহুদী, কি গ্রীক সকলেই প্রভুর বাক্য শুনলেন৷ 11 ঈশ্বর পৌলের হাত দিয়ে অনেক অলৌকিক ঘটনা সম্পন্ন করালেন৷ 12 এমন কি তাঁর স্পর্শ করা গামছা অসুস্থ লোকদের গায়ে ছোঁয়ালে তাদের রোগ ভাল হয়ে য়েত, আর অশুচি আত্মারাও তাদের মধ্য থেকে বের হয়ে য়েত৷ 13 সেই সময়ে কয়েকজন ইহুদী ওঝা ঘুরে বেড়াত, যাঁরা অশুচি আত্মায় পাওয়া লোকদের ছাড়াতো৷ ইহুদী মহাযাজক শীভার সাত ছেলেও এই কাজ করছিল৷ এই ইহুদীরা লোকদের মধ্য থেকে অশুচি আত্মা তাড়াতে প্রভু যীশুর নাম ব্যবহার করত৷ তারা বলত, ‘য়ে যীশুর কথা পৌল প্রচার করছেন, সেই যীশুর নামে আমি আদেশ করছি এর মধ্য থেকে বের হয়ে যাও!’ 14 15 কিন্তু একবার অশুচি আত্মা সেই ইহুদীদের বলল, ‘আমি যীশুকে জানি, পৌলকেও জানি, কিন্তু তোরা আবার কে?’ 16 এরপর যার মধ্যে দিয়াবলের অশুচি আত্মা বাস করছিল, সে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই শীভার ছেলেদের সবাইকে ধরাশাযী করল৷ এর ফলে সেই ইহুদীরা আহত ও উলঙ্গ অবস্থায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেল৷ 17 ইহুদী ও গ্রীক যাঁরা ইফিষে থাকত, তারা সবাই এই ঘটনার কথা জানতে পারল৷ এর ফলে তাদের সকলের মধ্যে ত্রাসের সঞ্চার হল; আর প্রভুর নাম সমাদৃত হল৷ লোকেরা যীশুর নামকে আরও উচ্চ সম্মান দিতে লাগল৷ 18 অনেকে যাঁরা বিশ্বাসী হল তারা নিজের নিজের অপকর্মের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করল৷ 19 আবার অনেকে যাঁরা যাদুক্রিয়া করত, তারা তাদের বইপত্র ও সাজসরঞ্জাম এনে প্রকাশ্যে আগুনে পুড়িয়ে দিল, গণনা করে দেখা গেল তার দাম ছিল পঞ্চাশ হাজার রৌপ্য মুদ্রা৷ 20 এইভাবে প্রবলভাবে প্রভুর বাক্য প্রসার লাভ করল এবং শক্তিশালী হতে লাগল; আর বহুলোক বিশ্বাস করল৷ 21 এই ঘটনার পর পৌল ঠিক করলেন য়ে তিনি মাকিদনিয়া ও আখায়া হয়ে জেরুশালেমে যাবেন৷ তিনি বললেন, ‘সেখানে গিয়ে পরে আমি রোমেও যাব৷’ 22 তিনি তাঁর দুজন সহকারীকে অর্থাত্ তীমথিয় ও ইরাস্তকে মাকিদনিযায় পাঠালেন আর নিজে কিছু দিন এশিয়ায় রয়ে গেলেন৷ 23 সেই সময় ইফিষে মহা গণ্ডগোলের সৃষ্টি হল৷ ঈশ্বরের পথের বিষয়ই ছিল এই গণ্ডগোলের কারণ৷ ঘটনাটা এইভাবে হল; 24 দীমীত্রিয় নামে একজন স্বর্ণকার দেবী দীয়ানার রূপোর মন্দির তৈরী করত আর কারিগরদের অনেক কাজ জুগিয়ে দিত৷ 25 সে তার ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত অন্য সব কারিগরদের একত্র করে সভায় বলল, ‘ভাইসব তোমরা জান এই কাজের দ্বারা আমরা সকলে ভালই রোজগার করি৷ 26 এও তো দেখতে ও শুনতে পাচ্ছ কেবল এই ইফিষে নয়, প্রায় সমস্ত এশিয়ায় এই পৌল বহু লোককে প্রভাবিত করেছে ও এই বলে ফিরিয়েছে য়ে, মানুষের হাতে গড়া দেবতারা নাকি দেবতাই নয়৷ 27 এতে আমাদের এই বৃত্তির য়ে কেবল দুর্নাম হবে তাই নয়, মহাদেবী দীয়ানার মন্দিরও লোকসমক্ষে তুচ্ছ হবে৷ আবার যাকে সমস্ত এশিয়া এমন কি সারা জগত সংসার উপাসনা করে, তিনিও তাঁর বিপুল গরিমা হারাবেন৷’ 28 এই কথা শুনে লোকেরা প্রচণ্ড রেগে গেল৷ তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘ইফিষের দীয়ানাই মহান!’ 29 এতে সমস্ত শহরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিল৷ সকলে একসঙ্গে রঙ্গভূমির দিকে ছুটল, তারা তাদের সঙ্গে টানতে টানতে নিয়ে চলল গায় ও আরিষ্টার্খ নামে দুজন মাকিদনিয়ান লোককে, যাঁরা পৌলের সঙ্গী ছিলেন৷ 30 তখন পৌল লোকদের কাছে য়েতে চাইলে অনুগামীরা তাঁকে বাধা দিল, য়েতে দিল না৷ 31 সেই প্রদেশের কয়েকজন নেতা যাঁরা তাঁর বন্ধু ছিলেন, তাঁরা পৌলের কাছে লোক পাঠিয়ে অনুরোধ করলেন য়েন তিনি রঙ্গভূমিতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে না আনেন৷ 32 এদিকে নানা লোকে নানা কথা বলে চিত্কার করছিল, কারণ সভার মধ্যে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়ে গিয়েছিল, অধিকাংশ লোক জানতই না কেন তারা সেখানে এসেছে৷ 33 কয়েকজন ইহুদী আলেকসান্দারকে সামনে ঠেলে দিল, একেই জনতার কয়েকজন পরামর্শ দিচ্ছিল৷ তিনি সকলকে ইশারায় চুপ করতে বললেন, ও তাদের কাছে কিছু বলতে চাইলেন৷ 34 কিন্তু তারা যখন বুঝতে পারল য়ে তিনি একজন ইহুদী তখন জোরে চিত্কার করতে লাগল৷ দুঘন্টা ধরে তারা শুধু এই বলে চেঁচিয়েই চলল, ‘ইফিষের দীয়ানাই মহান!’ 35 শেষ পর্যন্ত শহরের করণিক জনতাকে শান্ত করে বললেন, ‘হে ইফিষীয়রা, বল দেখি, ইফিষীয়দের শহর য়ে মহাদেবী দীয়ানার মন্দিরের তত্ত্বাবধান করে এবং সেই মন্দিরের পবিত্র পাথর য়ে আকাশ থেকে পড়েছিল তা কে না জানে? 36 তাই এই কথা যখন কেউ অস্বীকার করতে পারবে না, তখন তোমাদের শান্ত হওয়া উচিত এবং অসংযত কোন কাজ করা উচিত নয়৷ 37 কারণ এই য়ে লোকদের তোমরা এখানে এনেছ, এরা তো মন্দির লুঠও করে নি বা আমাদের দেবীর অপমানও করে নি৷ 38 তাই যদি কারো বিরুদ্ধে দীমীত্রিয় ও তার সম-ব্যবসাযীদের কোন অভিযোগ থাকে, তবে আদালত খোলা আছে, বিচারকেরাও আছেন, তারা সেখানে গিয়ে তাদেব বিরুদ্ধে মামলা করুক! 39 আর যদি অন্য কোন বিষয় অনুসন্ধানের থাকে তবে তার বিচার আইনানুগ বিচার সভায় করা য়েতে পারে৷ 40 কারণ এই ভয় আছে য়ে, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে পারে য়ে এই গণ্ডগোলের কারণ আমরাই, এই সভা ডাকার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ আমরা দেখাতে পারব না৷’ 41 এই বলে তিনি সভা ভঙ্গ করলেন৷
1 সেই হাঙ্গামা থেমে যাবার পর পৌল যীশুর অনুগামীদের ডেকে পাঠালেন, আর তাদের সকলকে উত্সাহ দান করে ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মাকিদনিয়ার অঞ্চলগুলিতে যাবার জন্য রওনা দিলেন৷ 2 তিনি সেই অঞ্চল দিয়ে মাকিদনিয়ায় য়েতে য়েতে বিভিন্ন জায়গায় খ্রীষ্টানুসারীদের অনেক কথা বলে উত্সাহ দিলেন, শেষে গ্রীসে এসে পৌঁছলেন৷ 3 সেখানে তিনি তিন মাস থাকলেন৷ তিনি যখন সমুদ্রপথে সুরিয়া যাবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন তখন ইহুদীরা তাঁর বিরুদ্ধে এক চক্রান্ত করছে এই কথা জানতে পেরে তিনি মাকিদনিয়া হয়ে সুরিয়া যাবেন বলে ঠিক করলেন৷ 4 কিছু কিছু লোক তাঁর সঙ্গে যাচ্ছিল, এরা হল বিরয়ার পুর্হের ছেলে সোপাত্র, থিষলনীকিয় থেকে আগত আরিষ্টার্খ ও সিকুন্দ, দর্বীর গায় ও তীমথিয় আর এশিয়ার তুখিক ও ত্রফিম৷ 5 এরা পৌলের আগেই রওনা হয়ে ত্রোয়াতে গিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল৷ 6 খামিরবিহীন রুটির পর্বের পর আমরা ফিলিপী থেকে সমুদ্রপথে রওনা হয়ে পাঁচ দিন পর ত্রোয়াতে তাদের সঙ্গে য়োগ দিলাম৷ সেখানে আমরা সাত দিন থাকলাম৷ 7 রবিবার আমরা যখন আবার প্রভুর ভোজ গ্রহণ করতে একত্রিত হলাম তখন পৌল পরের দিন সেখান থেকে চলে যাবেন বলে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত তাদের সাথে কথা বলতে থাকলেন৷ 8 আমরা ওপরের য়ে ঘরে সমবেত হয়েছিলাম সেখানে অনেক প্রদীপ ছিল৷ 9 উতুখ নামে এক যুবক সেই ঘরের জানালায় বসেছিল৷ পৌলের দীর্ঘ বক্তৃতার সময় সে গভীরভাবে ঘুমিয়ে গেল৷ তারপর ঘুমের ঘোরে সে তিনতলা থেকে নীচে পড়ে গেল৷ লোকেরা গিয়ে যখন তাকে তুলল, দেখা গেল সে মারা গেছে৷ 10 পৌল নিজেই নীচে নেমে গেলেন৷ তিনি তার দেহের ওপরে নিজেকে রেখে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘তোমরা বিচলিত হযো না, কারণ দেখ এর মধ্যে এখনও প্রাণ আছে৷’ 11 এরপর পৌল ওপরের ঘরে গিয়ে রুটি ভাঙ্গলেন ও কিছু খাওয়া-দাওয়া করে ভোর পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বললেন, তারপর তিনি তাদের কাছ থেকে রওনা হলেন৷ 12 বিশ্বাসীরা সেই যুবককে জীবিত অবস্থায় তার বাড়ি নিয়ে য়েতে পেরে খুবই আশ্বস্ত হল৷ 13 আমরা সমুদ্রপথে আঃসে রওনা দিয়ে পৌলের আগেই সেখানে পৌঁছালাম৷ ঠিক ছিল য়ে পৌল আঃসে হাঁটা পথে যাবেন আর সেখানে আমরা তাঁকে জাহাজে তুলে দেব৷ 14 পরে আঃসে পৌলের সঙ্গে আমাদের দেখা হল, আর তিনি জাহাজে আমাদের কাছে এলেন৷ আমরা সকলে মিতুলীনী শহরে গেলাম৷ 15 সেখান থেকে পরের দিন জাহাজে করে খীয়ের দ্বীপের কাছে পৌঁছালাম৷ দ্বিতীয় দিনে আমরা সামঃ দ্বীপ পার হয়ে তার পরদিন মিলীতে গেলাম, 16 কারণ পৌল আগেই ঠিক করেছিলেন য়ে তিনি ইফিষে নামবেন না৷ তিনি এশিয়াতে বেশী সময় থাকতে চাইলেন না, কারণ পঞ্চাশত্তমীর আগেই জেরুশালেমে পৌঁছবার জন্য তিনি ব্যগ্র হয়ে উঠেছিলেন৷ 17 মিলীতে এসে তিনি ইফিষের মণ্ডলীর প্রাচীনদের তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠালেন৷ 18 তাঁরা এলে পর তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা জান আমি এশিয়াতে থাকাকালীন প্রথম দিন থেকেই তোমাদের সঙ্গে কিভাবে সমস্ত সময় কাটিয়েছি৷ 19 ইহুদীরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল, আমাকে বড় সঙ্কটের মধ্য দিয়ে য়েতে হয়েছিল, কিন্তু তোমরা জান য়ে এসত্ত্বেও আমি নম্রভাবে চোখের জলে সর্বদাই প্রভুর সেবা করে গেছি৷ 20 তোমাদের জন্য যা মঙ্গলজনক, ইতস্তত না করে সর্বদা তোমাদের কাছে বলেছি৷ এমন কি বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষা দিয়েছি ও সুসমাচার প্রচার করেছি৷ 21 ইহুদী কি অইহুদী গ্রীক সকলের কাছেই বলেছি য়েন তারা মন-ফেরায়, ঈশ্বরের দিকে ফেরে ও প্রভু যীশুকে বিশ্বাস করে৷ 22 কিন্তু এখন আমাকে পবিত্র আত্মার নির্দেশ মানতে হবে, তাই আমি জেরুশালেমে যাচ্ছি৷ সেখানে আমার কি হবে তা আমি জানি না৷ 23 তবে পবিত্র আত্মার সতর্কবাণীর মধ্য দিয়ে একথা জানি য়ে জেরুশালেমের প্রত্যেকটি শহরে আমার জন্য দুঃখ-কষ্ট ও কারাবরণ অপেক্ষা করছে৷ 24 আমি মনে করি আমার কাছে আমার জীবনের কোন মূল্য নেই৷ আমি মনে করি আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল প্রভু যীশুর কাছ থেকে য়ে কাজের ভার পেয়েছি তাতে লক্ষ্য স্থির রেখে য়েন শেষ পর্যন্ত দৌড়াতে পারি; সেই কাজ হল সকলের কাছে ঈশ্বরের অনুগ্রহের বার্তা ও সুসমাচার নিয়ে যাওয়া৷ 25 ‘এখন আমি যা বলছি মন দিয়ে শোন; তোমাদের মধ্যে যাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার জানিয়েছি তাদের কেউই আমার মুখ আর দেখতে পাবে না৷ 26 তাই আজ আমি তোমাদের কাছে একথা জোর দিয়ে বলছি য়ে এসত্ত্বেও তোমাদের মধ্যে যাঁরা উদ্ধার পাবে না, ঈশ্বর তাদের বিষয়ে আমাকে দোষী করবেন না৷ 27 আমি এসব কথা বলতে পারি য়ে ঈশ্বর তোমাদের যা কিছু জানাতে চেয়েছিলেন, সে সবই আমি তোমাদের জানিয়েছি৷ 28 নিজেদের ব্যাপারে সাবধান থেকো আর পবিত্র আত্মা তোমাদেরকে য়ে পালের দেখাশোনার ভার দিয়েছেন, ঈশ্বরের সেই মণ্ডলীর তত্ত্বাবধান কর, কারণ এই মণ্ডলী তিনি তাঁর রক্ত দিয়ে কিনেছেন৷ 29 আমি জানি, আমি চলে গেলে ভয়ঙ্কর নেকড়ের তোমাদের মধ্যে আসবে, তারা ঈশ্বরের এই পালকে ধ্বংস করতে চাইবে৷ 30 এমনকি তোমাদের মধ্য থেকে এমন সব লোক উঠবে যাঁরা খ্রীষ্টানুসারীদের নিজেদের অনুসারী করার জন্য উল্টোপাল্টা কথা বলবে৷ কিছু কিছু খ্রীষ্টানুসারীদের তারা সত্য থেকে সরিয়ে দেবে৷ 31 সাবধান ও সতর্ক থেকো! মনে রেখো, তোমাদের সঙ্গে আমি য়ে তিন বছর ছিলাম, সেই সময় তোমাদের জন্য চোখের জল ফেলে রাত দিন সতর্ক করে অনেক চেতনা দিয়েছি৷ 32 ‘এখন আমি তোমাদের ঈশ্বরের হাতে ও তাঁর অনুগ্রহের বার্তাতে তোমাদের সঁপে দিলাম, তা তোমাদের গড়ে তুলতে সমর্থ৷ ঈশ্বর তাঁর সমস্ত পবিত্র লোকদের য়ে আশীর্বাদ দিয়ে থাকেন, এই বার্তা তোমাদের সেই আশীর্বাদ দেবেন৷ 33 আমি যখন তোমাদের মধ্যে ছিলাম, তখন আমি কারোর কাছে অর্থ বা জামা কাপড় চাই নি৷ 34 তোমরা ভালভাবেই জান য়ে আমার নিজের ও সঙ্গীদের অভাব দূর করতে আমি এই দুহাতে কাজ করেছি৷ 35 আমি তোমাদের দেখিয়েছি কিভাবে কঠোর পরিশ্রম করে অভাবীদের সাহায্য করতে হয়৷ প্রভু যীশুর কথা স্মরণ করাও উচিত, কারণ তিনি বলেছেন, ‘গ্রহণ করার থেকে দান করা বেশী পুণ্যের৷” 36 এই কথা বলার পর তিনি তাদের সকলের সঙ্গে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করলেন৷ 37 এরপর সকলে খুব কান্নাকাটি করলেন ও পৌলের গলা জড়িয়ে ধরে তাঁকে চুমু দিলেন৷ তাঁরা তাঁকে আর দেখতে পাবেন না, একথা শুনে বিশেষ দুঃখ করলেন৷ পরে জাহাজ পর্যন্ত তাঁকে পৌঁছে দিতে গেলেন৷ 38
1 ইফিষের মণ্ডলীর প্রাচীনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সমুদ্র পথে সোজা কো দ্বীপে এলাম৷ পরদিন আমরা রোদঃ দ্বীপে গেলাম৷ রোদঃ থেকে পাতারায় চলে গেলাম৷ 2 পাতারায় এমন একটি জাহাজ পেলাম যা পার হয়ে ফৈনীকিয়া অঞ্চলে যাবে৷ আমরা সেই জাহাজে চড়ে যাত্রা করলাম৷ 3 পরে আমরা যাবার পথে কুপ্র দ্বীপের কাছে এলাম৷ আমাদের উত্তরদিকে দ্বীপটিকে দেখতে পাচ্ছিলাম; কিন্তু সেখানে আমরা জাহাজ ভেড়ালাম না৷ 4 আমর সুরিয়ার দিকে এগিয়ে গেলাম, সোর শহরে জাহাজ থামানো হল, কারণ সেখানে জাহাজ থেকে কিছু মাল নামানোর ছিল৷ আমরা সেখানে কিছু খ্রীষ্টানুসারীর দেখা পেয়ে তাঁদের সঙ্গে সাতদিন কাটালাম৷ পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁরা পৌলকে জেরুশালেম য়েতে নিষেধ করলেন৷ 5 কিন্তু সেখানে থাকার সময় শেষ হলে আমরা রওনা দিলাম এবং যাত্রাপথে এগিয়ে চললাম৷ সেখানকার খ্রীষ্টানুসারীরা সকলে নিজেদের পরিবার ও ছেলে-মেয়েদের সাথে করে নিয়ে এসে আমাদের বিদায় জানাতে শহরের বাইরে এলেন৷ সেখানে সমুদ্রতীরে আমরা হাঁটু গেড়ে বসে প্রার্থনা করে পরস্পরের কাছ থেকে বিদায় নিলাম৷ 6 এরপর আমরা জাহাজে উঠলাম আর তাঁরা বাড়ি ফিরে গেলেন৷ 7 সোর থেকে যাত্রা করে আমরা তলিমায়িতে পৌঁছালাম৷ আর সেখানকার খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সঙ্গে একদিন থাকলাম৷ 8 পরের দিন আমরা তলিমায়ি থেকে রওনা হয়ে কৈসরিয়ায় এলাম৷ সেখানে সুসমাচার প্রচারক ফিলিপের বাড়িতে উঠলাম৷ ইনি সেই সাতজন মনোনীত লোকদের মধ্যে একজন৷ আমরা সেখানে তাঁর সঙ্গে থাকলাম৷ 9 এই ফিলিপের চারটি কুমারী কন্যা ছিলেন, এরা ভাববাণী বলতে পারতেন৷ 10 সেখানে বেশ কিছুদিন থাকার পর যিহূদিয়া থেকে আগাব নামে একজন ভাববাদী এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করলেন৷ 11 তিনি আমাদের কাছে এসে পৌলের কোমর বন্ধনীটি নিয়ে নিজের হাত পা বেঁধে বললেন, ‘পবিত্র আত্মা এই কথা বলছেন, ‘এই কোমর বন্ধনীটি যার তাকে জেরুশালেমের ইহুদীরা এইভাবে বেঁধে অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে৷’ 12 সেই কথা শুনে আমরা ও যীশুর অন্য অনুগামীরা পৌলকে অনুরোধ করলাম য়েন তিনি জেরুশালেমে না যান৷ 13 পৌল এর জবাবে বললেন, ‘তোমরা এ কি করছ? তোমরা এভাবে কান্নাকাটি করে আমার হৃদয় কি ভেঙে দিচ্ছ না? খ্রীষ্টের নামের জন্য আমি জেরুশালেমে কেবল শৃঙ্খলাবদ্ধ হবার জন্য যাব তাই নয়, আমি এমন কি মরতেও প্রস্তুত!’ 14 তাঁকে যখন আমরা জেরুশালেমে যাওয়া থেকে বিরত করতে পারলাম না, তখন আর অনুরোধ না করে চুপ করে গেলাম আর বললাম, ‘প্রভুর ইচ্ছাই পূর্ণ হোক্৷’ 15 এরপর আমরা প্রস্তুত হয়ে জেরুশালেমে রওনা হলাম৷ 16 কৈসরিয়া থেকে কয়েকজন অনুগামী (খ্রীষ্টানুসারী) আমাদের সঙ্গে চললেন৷ তারা ম্লাসোন নামে একজন লোকের বাড়িতে আমাদের তুললেন৷ ইনি ছিলেন কুপ্রের লোক, গোড়ায় যাঁরা খ্রীষ্টানুসারী হয়েছিলেন, ইনি তাদের অন্যতম৷ তাঁর বাড়ীতে আমাদের নিয়ে যাওয়া হল, য়েন আমরা সেখানে থাকতে পারি৷ 17 জেরুশালেমের বিশ্বাসীরা আমাদের দেখে বড়ই খুশী হলেন৷ 18 পরদিন পৌল আমাদের নিয়ে যাকোবের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে গেলেন৷ মণ্ডলীর প্রাচীনেরা সেখানে ছিলেন৷ 19 সেখানে পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর পৌল তাঁর কাজের মাধ্যমে অইহুদীদের মধ্যে ঈশ্বর য়েসব কাজ করেছেন, তা বিস্তারিতভাবে জানালেন৷ 20 এই কথা শুনে তাঁরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন৷ তাঁরা পৌলকে বললেন, ‘ভাই, আপনি তো জানেন, হাজার হাজার ইহুদী আজ খ্রীষ্টবিশ্বাসী হয়েছে৷ কিন্তু তারা তাদের মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতে বড়ই উত্সাহী৷ 21 তারা আপনার বিষয়ে এই কথা শুনেছে য়ে অইহুদীদের মধ্যে বাসকারী প্রবাসী ইহুদীদের আপনি নাকি মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে চলতে বারণ করেন৷ আপনি তাদের ছেলেদের সুন্নত করা বা ইহুদী রীতিনীতি মেনে চলা নাকি নিষেধ করেন! 22 আমরা কি করব? তারা নিশ্চয় শুনবে য়ে আপনি এখানে আছেন৷ 23 তাই আমরা যা বলি আপনি তাই করুন৷ আমাদের মধ্যে চারজন লোকের একটা মানত আছে৷ 24 আপনি তাদের সঙ্গে নিয়ে শুচিকরণের অনুষ্ঠানে য়োগ দিন, এজন্য তাদের যা খরচ পড়ে আপনি তা দিয়ে দিন৷ আর তারা য়েন তাদের মাথা নেড়া করে৷ তাহলে সকলে জানবে য়ে আপনার বিষয়ে য়ে সব কথা ওরা শুনেছে সে সব সত্য নয়, বরং আপনি নিজে মোশির বিধি-ব্যবস্থা যথারীতি পালন করেন৷ 25 অইহুদীদের মধ্য থেকে যাঁরা খ্রীষ্টবিশ্বাসী হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে আমরা লিখেছি য়ে:‘তারা য়েন প্রতিমার প্রসাদ, রক্ত, গলাটিপে মারা প্রাণীর মাংস না খায় ও য়ৌন পাপ থেকে দুরে থাকে৷” 26 তখন পৌল সেই কয়েকজনকে নিয়ে তাদের সঙ্গে নিজেকে শুচি করলেন৷ তারপর মন্দিরে গিয়ে শুচিকরণ অনুষ্ঠান কত দিনে সম্পূর্ণ হবে ও তাদের প্রত্যেকের জন্য কবে নৈবেদ্য উত্সর্গ করা হবে তাও জানালেন৷ 27 সাতদিন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, এমন সময় এশিয়া দেশের কয়েকজন ইহুদী মন্দিরের মধ্যে পৌলকে দেখতে পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নানা কথা বলে লোকদের উত্তেজিত করে তুলল, আর পৌলকে ধরে চিত্কার করে বলতে লাগল, 28 ‘হে ইস্রায়েলীয়রা, এদিকে এগিয়ে এসে সাহায্য কর! এ সেই লোক, এই লোকই আমাদের জাতির বিরুদ্ধে বলে বেড়াচ্ছে, আমাদের বিধি-ব্যবস্থার বিপরীত শিক্ষা দিচ্ছে আর এই মন্দিরের বিরুদ্ধেও কথা বলছে৷ এই হল সেই লোক য়ে সর্বত্র এই শিক্ষা দিয়ে বেড়াচ্ছে৷ দেখ মন্দিরের চত্বরে সে গ্রীকদের ঢুকিয়ে এই মন্দির অপবিত্র করেছে!’ 29 কারণ তারা এর আগে পৌলের সঙ্গে ইফিষের ত্রফিমকে শহরের মধ্যে দেখেছিল, মনে করেছিল পৌল তাঁকে মন্দিরের মধ্যে এনেছেন৷ ত্রফিম ছিলেন জাতিতে গ্রীক এবং ইফিমের লোক৷ 30 সমগ্র জেরুশালেমে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছিল আর লোকেরা একসঙ্গে ছুটল৷ তারা পৌলকে ধরে টানতে টানতে মন্দির থেকে বের করে দিল৷ সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে গেল৷ 31 লোকেরা পৌলকে হত্যা করার চেষ্টা করছিল৷ রোমান সেনাপতির কাছে খবর পৌঁছলো য়ে সারা জেরুশালেম শহরে প্রচণ্ড গোলমাল শুরু হয়েছে৷ 32 তিনি তখনই সৈন্যদের ও তাদের কর্মকর্তাদের নিয়ে সেখানে ছুটে এলেন৷ ইহুদীরা যখন সেনাপতিকে ও তার সঙ্গে সৈন্যদের দেখল, তখন পৌলকে প্রহার করা বন্ধ করল৷ 33 তখন সেনাপতি কাছে এসে পৌলকে গ্রেপ্তার করে ও তাঁকে দুটো শেকলে বাঁধতে হুকুম করলেন৷ এরপর সেনাপতি জিজ্ঞেস করলেন, ‘এ কে, এ কি দোষ করেছে?’ 34 তখন সেই ভীড়ের মধ্যে কেউ কেউ একরকম কথা বলল, আবার কেউ কেউ অন্য রকম কথা বলল৷ এই চেঁচামেচিতে তিনি কিছুই ঠিক করতে না পেরে পৌলকে দুর্গের মধ্যে দিয়ে যাবার হুকুম করলেন৷ 35 সমস্ত লোকেরা তাদের অনুসরণ করছিল৷ পৌল যখন সিঁড়ির কাছে এসেছেন, তখন জনতা এতই হিংস্র হয়ে উঠল য়ে সেনারা পৌলকে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে য়েতে লাগল৷ 36 কারণ জনতা চিত্কার করে বলছিল, ‘ওকে শেষ করে ফেলো!’ 37 তারা পৌলকে দুর্গের ভেতর দিয়ে নিয়ে য়েতে চাইলে পৌল সেনাপতিকে বললেন, ‘আমি আপনাকে কি কিছু বলতে পারি?’সেনাপতি বললেন, ‘তুমি দেখছি গ্রীক বলতে পার? 38 তাহলে তুমি সেই মিশরীয় নও য়ে কিছু সময় পূর্বে বিদ্রোহী হয়েছিল ও চার হাজার সন্ত্রাসবাদীকে নিয়ে মরুপ্রান্তরে পালিয়েছিল?’ 39 তখন পৌল বললেন, ‘না, আমি একজন ইহুদী, কিলিকিয়ার তার্ষ নামে এক প্রসিদ্ধ শহরের বাসিন্দা৷ আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, এই লোকদের কাছে আমায় কিছু বলতে দিন৷’ 40 সেনাপতি অনুমতি দিলে পৌল সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে লোকদের শান্ত হবার জন্য হাত নেড়ে ইঙ্গিত করলেন৷ সবাই যখন চুপ করল তখন তিনি ইব্রীয় ভাষায় বলতে শুরু করলেন৷
1 পৌল বললেন, ‘ভায়েরা ও পিতৃতুল্য ব্যক্তিরা, এখন শুনুন আমি আপনাদের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি!’ 2 ইহুদীরা যখন পৌলকে ইহুদীদের প্রচলিত ইব্রীয় ভাষায় কথা বলতে শুনল, তারা শান্ত হল৷ তখন তিনি বললেন, 3 ‘আমি একজন ইহুদী, আমি কিলিকিয়ার তার্ষের শহরে জন্মেছি; কিন্তু এই শহরে আমি বড় হয়ে উঠেছি৷ গমলীয়েলেরচরণে বসে আমি আমাদের পিতৃপুরুষদের দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষালাভ করেছি৷ আজ আপনারা সকলে য়েমন, তেমনি আমিও ঈশ্বরের সেবার জন্য উদ্যোগী ছিলাম৷ 4 খ্রীষ্টের পথে যাঁরা চলত তাদের আমি নির্যাতন করতাম, এমনকি কারো কারো মৃত্যু ঘটিয়েছিলাম৷ স্ত্রী, পুরুষ সকলকেই আমি গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখতাম৷ 5 মহাযাজক ও ইহুদী সমাজপতিরা সকলে এই কথার সত্যতা প্রমাণ দিতে পারেন৷ তাদের কাছ থেকে চিঠি নিয়ে ইহুদী ভাইদের কাছে যাবার জন্য আমি দম্মেশকের পথে রওনা দিয়েছিলাম৷ যীশুর অনুগামী যাঁরা সেখানে ছিল তাদের গ্রেপ্তার করে জেরুশালেমে আনবার জন্য গিয়েছিলাম, য়েন তাদের শাস্তি দেওয়া হয়৷ 6 ‘আর এইরকম ঘটল, আমি চলতে চলতে দম্মেশকের কাছাকাছি এলে, দুপুর বেলা হঠাত্ আকাশ থেকে তীব্র আলোর ছটা আমার চারদিকে ছেয়ে গেল৷ 7 আমি মাটিতে পড়ে গেলাম আর এক রব শুনলাম, ‘পৌল, পৌল তুমি কেন আমায় নির্য়াতন করছ?’ 8 আমি বললাম, ‘প্রভু, আপনি কে?’ তিনি আমায় বললেন, ‘যাকে তুমি নির্য়াতন করছ, আমি সেই নাসরতীয় যীশু৷’ 9 যাঁরা আমার সঙ্গে ছিল তারা সেই আলো দেখতে পেয়েছিল, কিন্তু যিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর রব তারা শুনতে পায় নি৷ 10 আমি বললাম, ‘প্রভু আমায় কি করতে হবে?’ প্রভু আমায় বললেন, ‘ওঠ, দম্মেশকে যাও৷ য়ে কাজের জন্য তোমাকে মনোনীত করা হয়েছে তা সেখানেই তোমাকে বলা হবে৷’ 11 সেই তীব্র আলোর ঝলকে আমি অন্ধ হয়ে গেছিলাম৷ তাই আমার সঙ্গীরা আমার হাত ধরে দম্মেশকে নিয়ে গেল৷ 12 ‘সেখানে অননিয় নামে একজন ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন৷ তিনি মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতেন৷ সেখানকার ইহুদীদের মধ্যে তাঁর সুনাম ছিল৷ 13 তিনি আমার কাছে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ভাই শৌল, তুমি দৃষ্টিশক্তি লাভ কর৷’ আর সেই মুহূর্তে আমি তাঁকে দেখতে পেলাম৷ 14 তিনি বললেন, ‘আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর তোমায় বহুপূর্বেই মনোনীত করেছেন, য়েন তুমি তাঁর পরিকল্পনা জানতে পার এবং সেই ধার্মিকজনকে দেখতে পাও ও তাঁর রব শুনতে পাও৷ 15 তুমি যা দেখলে ও শুনলে সকল লোকের কাছে সে বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে৷ 16 এখন আর দেরী না করে ওঠ, বাপ্তিস্ম নাও আর তোমার পাপ ধুয়ে ফেল৷ উদ্ধার লাভের জন্য যীশুতে বিশ্বাস কর৷’ 17 ‘পরে আমি জেরুশালেমে ফিরে এসে যখন মন্দিরের চত্বরে প্রার্থনা করছিলাম, সেই সময় এক দর্শন পেলাম৷ 18 দর্শনে দেখলাম যীশু আমায় বলছেন, ‘শিগ্গির ওঠ! এখুনি জেরুশালেম থেকে চলে যাও! কারণ আমার বিষয়ে তুমি য়ে সাক্ষ্য দিচ্ছ, তারা তা গ্রহণ করবে না৷’ 19 আমি বললাম, ‘প্রভু, তারা তো ভাল করেই জানে য়ে যাঁরা তোমায় বিশ্বাস করে, তাদের গ্রেপ্তার করে মারধর করার জন্য আমি সমাজ-গৃহগুলিতে য়েতাম৷ 20 যখন তোমার সাক্ষী স্তিফানের রক্তপাত হচ্ছিল, তখন আমি সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে তার অনুমোদন করেছিলাম, আর যাঁরা তাকে মারছিল তাদের পোশাক আগলাচ্ছিলাম৷’ 21 তখন যীশু আমায় বললেন, ‘এখন যাও! আমি তোমাকে বহুদূরে অইহুদীদের কাছে পাঠাচ্ছি৷” 22 পৌল অইহুদীদের কাছে যাওয়ার কথা বললে লোকেরা তা আর শুনতে চাইল না৷ ইহুদীরা সকলে জোরে চিত্কার করে উঠল, ‘মার বেটাকে! একে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দাও! এ বেঁচে থাকার অয়োগ্য!’ 23 তারা যখন এভাবে চিত্কার করছে ও তাদের পোশাক খুলে ছুঁড়ে ফেলে বাতাসে ধুলো ওড়াচ্ছে, 24 তখন সেই সেনাপতি পৌলকে দুর্গের মধ্যে নিয়ে য়েতে হুকুম দিয়ে বললেন, ‘একে চাবুক মেরে দেখ এ কি বলে, লোকেরা কেন এর বিরুদ্ধে এমনি করে চিত্কার করছে!’ 25 সৈনিকরা যখন পৌলকে চাবুক মারার জন্য বাঁধছে তখন য়ে সেনাপতি সেখানে দাঁড়িয়েছিল পৌল তাকে বললেন, ‘একজন রোমান নাগরিকের বিচার না করে তার কোন দোষ না পেলেও তাকে চাবুক মারা কি আইনসম্মত কাজ হবে?’ 26 এই কথা শুনে সেই সেনাপতি তার ওপরওয়ালার কাছে গিয়ে বলল, ‘আপনি জানেন আপনি কি করতে যাচ্ছেন? এ লোকটা তো একজন রোমান৷’ 27 তখন সেই সেনাপতি পৌলের কাছে এসে বলল, ‘আমায় বল দেখি, তুমি কি রোমীয়?’পৌল বললেন, ‘হ্যাঁ৷’ 28 তখন সেই সেনাপতি বলল, ‘এই নাগরিকত্ব লাভ করতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে৷’পৌল বললেন, ‘কিন্তু আমি জন্মসূত্রেই রোমীয়৷’ 29 যাঁরা তাকে প্রশ্ন করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল তারা এই কথা শুনে পিছিয়ে গেল৷ সেনাপতিও ভয় পেয়ে গেল যখন বুঝতে পারল য়ে পৌল একজন রোমান নাগরিক, আর সে তাঁকে বেঁধেছে৷ 30 পরদিন ইহুদীরা কেন পৌলের ওপর দোষ দিচ্ছে তা জানবার জন্য রোমান সেনাপতি ইহুদীদের প্রধান যাজকদের ও মহাসভার সকল সভ্যকে জড়ো হতে হুকুম দিল; আর পৌলকে সেখানে তাদের মাঝে মুক্ত অবস্থায় হাজির করল৷
1 পৌল মহাসভার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘ভাইয়েরা, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমি আজ পর্যন্ত শুদ্ধ বিবেক অনুযাযী জীবনযাপন করছি৷’ 2 তখন মহাযাজক অননিয়, পৌলের কাছাকাছি যাঁরা দাঁড়িয়েছিল তাদের হুকুম দিলেন পৌলের মুখে চড় মেরে তার মুখ বন্ধ করে দিতে৷ 3 তখন পৌল অননিয়কে বললেন, ‘হে চুনকাম করা প্রাচীর! স্বয়ং ঈশ্বর তোমায় আঘাত করবেন৷ আইনসঙ্গত ভাবে আমার বিচার করার জন্য তুমি এখানে বসেছ; আর আমাকে আঘাত করার হুকুম দিয়ে তুমি মোশির বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যাচ্ছ৷’ 4 যাঁরা পৌলের আশেপাশে দাঁড়িয়েছিল তারা তাঁকে বলল, ‘ঈশ্বরের মহাযাজকের সঙ্গে তুমি এইভাবে কথা বলতে পারো না৷ তুমি তাঁকে অপমান করছ!’ 5 পৌল বললেন, ‘ভাইরা, আমি বুঝতে পারি নি য়ে উনি মহাযাজক; কারণ এরকম লেখা আছে, ‘তুমি সমাজের কোন নেতার বিরুদ্ধে কটু কথা বলো না৷’ 6 পৌল যখন বুঝতে পারলেন য়ে তাদের মধ্যে কিছু সভ্য সদ্দূকী ও কিছু সভ্য ফরীশী, তখন তিনি মহাসভার উদ্দেশ্যে চিত্কার করে বলে উঠলেন, ‘ভাইরা আমি একজন ফরীশী! আর ফরীশীদেরই সন্তান৷ মৃতদের পুনরুত্থান হবে বলে আমার য়ে প্রত্যাশা আছে, তার জন্যই আমার এই বিচার হচ্ছে!’ 7 পৌলের কথা শুনে ফরীশী ও সদ্দূকীদের মধ্যে বিরোধ বেধে গেল৷ আর সভা দুটো দলে ভাগ হয়ে গেল৷ 8 কারণ সদ্দূকীরা বলত পুনরুত্থান বলে কিছু নেই, স্বর্গদূত বা আত্মা বলেও কিছু নেই; কিন্তু ফরীশীরা উভয়ই বিশ্বাস করত৷ 9 চারদিকে বিরাট কোলাহল শুরু হয়ে গেল৷ ফরীশীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন ব্যবস্থার শিক্ষক উঠে দাঁড়িয়ে খুব জোরালো তর্ক জুড়ে দিল, তারা বলল, ‘আমরা এঁর কোন দোষই দেখতে পাচ্ছি না! হয়তো কোন আত্মা বা স্বর্গদূত দম্মেশকের পথে সত্যসত্যই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন!’ 10 এইভাবে গণ্ডগোল বাড়তে বাড়তে লড়াইয়ে পরিণত হল৷ সেনাপতি ভয় পেয়ে গেলেন, য়ে তারা হয়তো পৌলকে টেনে-হিঁচড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলবে; তাই তিনি হুকুম দিলেন য়েন সৈন্যরা নেমে গিয়ে ইহুদীদের মধ্য থেকে পৌলকে স্বর্গে নিয়ে যায়৷ 11 পরদিন রাতে প্রভু যীশু পৌলের কাছে এসে দাঁড়ালেন৷ তিনি বললেন, ‘সাহস কর! কারণ তুমি আমার বিষয়ে য়েমন জেরুশালেমে সাক্ষ্য দিয়েছ, তেমনি রোমেও আমার কথা তোমাকে বলতে হবে!’ 12 পরের দিন সকালে ইহুদীরা জোট বেঁধে দিব্যি করে বলল, ‘পৌলকে হত্যা না করা পর্যন্ত তারা অন্ন জল মুখে তুলবে না৷ 13 যাঁরা এই চক্রান্ত করেছিল তারা সংখ্যায় প্রায় চল্লিশ জনের কিছু বেশী ছিল৷ 14 সেই ইহুদীরা প্রধান যাজক ও সমাজপতিদের কাছে গিয়ে বলল, ‘আমরা শপথ করেছি য়ে পৌলকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমরা অন্ন জল মুখে তুলব না৷ 15 এখন আপনারা মহাসভার সভ্যদের সঙ্গে সেনাপতির কাছে আবেদন করুন, য়েন তিনি আপনাদের কাছে পৌলকে নামিয়ে আনেন, বলুন য়ে আপনারা তার কাছে আরো কিছু প্রশ্ন করতে চান৷ সে এখানে আসার আগেই আমরা তাকে হত্যা করার জন্য তৈরী রইলাম৷’ 16 কিন্তু পৌলের এক ভাগ্নে এই চক্রান্তের কথা জানতে পেরে দুর্গের মধ্যে ঢুকে পৌলকে সব কথা জানিয়ে দিল৷ 17 পৌল তখন শতপতিদের একজনকে কাছে ডেকে বললেন, ‘আপনি এই যুবককে সেনাপতির কাছে নিয়ে যান, কারণ তাকে এর কিছু বলার আছে৷’ 18 তাতে তিনি সেই যুবককে সেনাপতির কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘বন্দী পৌল আমার এই যুবককে আপনার কাছে নিয়ে আসতে বললেন, কারণ এ আপনাকে কিছু বলতে চায়৷’ 19 তখন সেনাপতি যুবকটির হাত ধরে এক পাশে নিয়ে গিয়ে একান্তে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি আমায় কি বলতে চাও বল৷’ 20 সেই যুবক বলল, ‘ইহুদীরা পরামর্শ করে ঠিক করেছে য়ে তারা পৌলকে আরও বিশদভাবে প্রশ্ন করার মিথ্যা অজুহাত নিয়ে আপনার কাছে এসে অনুরোধ করবে য়েন আপনি পৌলকে কাল মহাসভার সামনে হাজির করেন৷ 21 কিন্তু আপনি তাদের কথায় বিশ্বাস করবেন না, কারণ তাদের মধ্যে চল্লিশ জনেরও বেশী লোক পৌলকে হত্যা করার জন্য লুকিয়ে অপেক্ষা করে আছে৷ তারা নিজেদের মধ্যে শপথ করেছে য়ে, পৌলকে না মারা পর্যন্ত তারা অন্ন জল মুখে তুলবে না৷ তারা কেবল আপনার সম্মতির অপেক্ষায় আছে৷’ 22 তখন সেনাপতি ঐ যুবককে এই বলে বিদায় দিলেন য়ে, ‘সে য়ে তার সঙ্গে দেখা করেছে তা য়েন কেউ না জানতে পারে৷’ 23 পরে তিনি দুজন সেনাপতিকে কাছে ডেকে বললেন, ‘দুশো সৈনিককে রাত নটায় কৈসরিয়া যাবার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলো, এদের সঙ্গে দুশো বর্শাধারী ও সত্তর জন অশ্বারোহী সৈন্য দিও৷ 24 পৌলের জন্যও অশ্ব প্রস্তুত রেখো, তাতে করে তাকে রাজ্যপাল ফীলিক্সের কাছে পৌঁছে দিও৷ 25 আর তিনি এরূপ একটি পত্র লিখে সঙ্গে দিলেন: 26 মহামহিম রাজ্যপাল ফীলিক্স সমীপেষু, ক্লৌদিয় লুদিয়ের অভিবাদন গ্রহণ করুন৷ 27 পৌল নামের লৌকটিকে ইহুদীরা ধরে হত্যা করতে উদ্য়ত হয়েছিল; কিন্তু আমি যখন জানতে পারলাম য়ে সে রোমান নাগরিক তখন আমার সৈন্যদের নিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে আনলাম৷ 28 এর বিরুদ্ধে য়ে কি অভিযোগ আছে তা জানার জন্য আমি একে ইহুদীদের মহাসভার সামনে আনি৷ 29 সেখানে আমি বুঝতে পারলাম য়ে ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ওর উপর দোষারোপ করা হচ্ছে, কিন্তু মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বা কারাগারে দেওয়ার মত এর কোন দোষ আমি পাই নি৷ 30 এই লোকের বিরুদ্ধে হত্যার চক্রান্ত করা হচ্ছে, একথা যখন আমাকে জানানো হল, তখন তাড়াতাড়ি একে আমি আপনার কাছে পাঠালাম৷ যাঁরা এর উপর দোষারোপ করছে তাদেরও বলেছি, তারা আপনার কাছে গিয়ে এর বিরুদ্ধে যা বলবার বলবে৷ 31 তখন সেনাপতির সেই আদেশ অনুসারে সেনারা পৌলকে নিয়ে সেই রাতেই আন্তিপাতিতে গেল৷ 32 পরদিন তাঁর সঙ্গে কেবল অশ্বারোহী সৈন্যদের যাবার ব্যবস্থা করে বাকী সৈন্যরা দুর্গে ফিরে এল৷ 33 তারা কৈসরিয়ায় পৌঁছে সেই পত্রখানি রাজ্যপালের হাতে দিয়ে পৌলকে তাঁর কাছে হাজির করল৷ 34 রাজ্যপাল পত্রখানি পড়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তার নিজের প্রদেশ কোনটি৷’ তিনি জানতে পারলেন য়ে পৌল কিলিকিয়ার লোক, 35 তখন বললেন, ‘তোমার অভিযোগকারীরা এসে পৌঁছালে আমি তোমার কথা শুনব৷’ এই কথা বলে তিনি পৌলকে হেরোদের প্রাসাদে পাহারা দিয়ে রাখতে বললেন৷
1 পাঁচদিন পর মহাযাজক অননিয় ইহুদী সমাজের কয়েকজন বৃদ্ধ নেতা ও উকিল তর্তুল্লকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে গেলেন; আর তারা পৌলের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন৷ 2 পৌলকে ডেকে পাঠানো হল, তখন ফীলিক্সের সামনে তর্তুল্ল সওয়াল শুরু করলেন, ‘মহামান্য ফীলিক্স! আপনার জন্যই আমরা মহাশান্তিতে আছি; আপনার দূরদৃষ্টির জন্য এই জাতির অনেক সংস্কার সাধন হয়েছে৷ 3 একথা আমরা সকলে সর্বত্র সম্পূর্ণ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করছি৷ 4 কিন্তু বেশী কথা বলে আমি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাই না৷ এইজন্য আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনি অনুগ্রহ করে আমাদের এই সামান্য আবেদন শুনুন৷ দয়া করে ধৈর্য্য ধরুন৷ 5 কারণ আমরা দেখছি, ঐ লোকটাই হচ্ছে যত নষ্টের মূল৷ জগতে য়েখানে যত ইহুদী আছে এ তাদের মধ্যে গণ্ডগোল পাকাচ্ছে, এ নাসরতীয় দলের একজন নেতা৷ 6 আর এ আমাদের মন্দিরও অশুচি করতে চেয়েছিল, তাই আমরা একে ধরে এনেছি৷আমরা কি বিষয়ে এর প্রতি দোষারোপ করছি তা আপনি নিজে একে জিজ্ঞেস করলেই সব জানতে পারবেন৷’ 7 8 9 সমবেত ইহুদীরাও এতে সায় দিয়ে বলল, ‘এ সবই সত্য৷’ 10 রাজ্যপাল যখন পৌলকে বলার জন্য ইশারা করলেন, তখন পৌল বলতে শুরু করলেন, ‘রাজ্যপাল ফীলিক্স, আপনি অনেক বছর ধরে এই জাতির বিচার করছেন জেনে আমি আনন্দের সঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি৷ 11 আপনি অনুসন্ধান করলে দেখবেন, আজ বারো দিনের বেশী হয় নি আমি উপাসনা করার জন্য জেরুশালেমে গিয়েছিলাম৷ 12 আর এই ইহুদীরা মন্দিরের মধ্যে আমাকে কারোর সঙ্গে ঝগড়া করতে বা সমাজ-গৃহে জনতাকে উত্তেজিত করতে দেখে নি৷ 13 এরা আমার বিরুদ্ধে য়ে দোষারোপ করছে তার কোন প্রমাণ আপনাকে দিতে পারবে না৷ 14 কিন্তু আপনার কাছে আমি একথা স্বীকার করছি, আমি যীশুর পথের অনুসারী হয়ে আমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বরের উপাসনা করি৷ আমার দোষারোপকারীরা বলছে য়ে সেই পথ ঠিক নয়৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থায় যা কিছু লেখা আছে এবং ভাববাদীদের গ্রন্থে যা লেখা আছে আমি সে সবে বিশ্বাস করি৷ 15 এদের মতো আমারও ঈশ্বরের ওপর প্রত্যাশা আছে য়ে ধার্মিক ও অধার্মিক উভয়েরই পুনরুত্থান হবে৷ 16 এইজন্য আমিও সর্বদা সেইভাবে চলি যাতে ঈশ্বর ও মানুষের সামনে নিজের বিবেককে শুদ্ধ রাখতে পারি৷ 17 ‘অনেক বছর পর আমি আমার জাতির লোকদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে এসেছিলাম এবং মন্দিরে নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে গিয়েছিলাম৷ 18 সেই সময় তারা আমাকে মন্দিরের মধ্যে শুচিশুদ্ধ অবস্থাতেই দেখেছিল৷ সেখানে তখন কোন ভীড় বা গণ্ডগোলহয় নি৷ 19 এশিয়া থেকে কিছু ইহুদী সেখানে এসেছিল৷ আমার বিরুদ্ধে তাদের কিছু বলার থাকলে আপনার কাছে এসে তারা আমার প্রতি দোষারোপ করতে পারত৷ 20 অথবা যাঁরা এখানে উপস্থিত আছে তারাই বলুক আমি যখন মহাসভার সামনে ছিলাম, তারা কি আমার কোন দোষ দেখতে পেয়েছে? 21 না কেবল তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে মৃতদের পুনরুত্থানের বিষয়ে আমার বিশ্বাস ঘোষণা করেছি বলে আজ আপনাদের সামনে আমার বিচার হচ্ছে৷’ 22 ফীলিক্স সেই পথের বিষয় ভালভাবেই জানতেন, তাই তিনি বিচার স্থগিত রাখলেন, আর বললেন, ‘প্রধান সেনাপতি লুষিয় এলে আমি এর বিচার নিষ্পত্তি করব৷’ 23 তিনি সেনাপতিকে হুকুম দিলেন, য়েন পৌলকে প্রহরারত অবস্থায় রাখা হয়, কিন্তু কিছু স্বাধীনতাও তাকে দিলেন, ‘এর কোন বন্ধু যদি এর দেখাশোনা করতে আসে তবে বারণ করো না৷’ 24 এর কয়েকদিন পর ফীলিক্স তাঁর ইহুদী স্ত্রী দ্রুষিল্লাকে নিয়ে সেখানে এলে পৌলকে ডেকে পাঠালেন৷ ফীলিক্স পৌলের মুখে খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসের কথা শুনলেন৷ 25 কিন্তু পৌল যখন তাকে ন্যায়পরায়ণতা, আত্মসংযম ও ভবিষ্যতের মহাবিচারের কথা শোনাচ্ছিলেন, তখন ফীলিক্স বেশ ভয় পেয়ে গেলেন, আর বললেন, ‘তুমি এখন যাও আমার আবার সুয়োগ হলে তোমায় ডেকে পাঠাবো৷’ 26 এই সময় তিনি আশা করছিলেন য়ে পৌল তাকে টাকা দেবেন, তাই তিনি বার বার পৌলকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন৷ 27 দুবছর কেটে যাবার পর পর্কিয় ফীষ্ট ফীলিক্সের পদে নিযুক্ত হলেন৷ আর ফীলিক্স ইহুদীদের সন্তুষ্ট রাখার জন্য পৌলকে বন্দী রেখে গেলেন৷
1 ফীষ্ট সেই প্রদেশে এলেন, এর তিনদিন পর তিনি কৈসরিয়া থেকে জেরুশালেমে গেলেন৷ 2 সেখানে প্রধান যাজকরা ও ইহুদী সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে পৌলের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ জানাল৷ 3 ফীষ্টের কাছে তারা এই আবেদন জানাল য়েন তিনি পৌলকে জেরুশালেমে পাঠাবার ব্যবস্থা করেন৷ তারা এই অনুগ্রহ দেখানোর অনুরোধ করেছিল কারণ তারা পথেই পৌলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল৷ 4 কিন্তু ফীষ্ট বললেন, ‘না, পৌল কৈসরিয়ায় বন্দী হয়ে আছে এবং আমি শিগ্গির কৈসরিয়ায় যাব৷ 5 তাই তোমাদের মধ্যে যাঁরা ক্ষমতায় আছে, তারা আমার সঙ্গে সেখানে চলুন৷ এই লোকটি যদি কিছু ভুল করে থাকে তবে তা সেখানেই পেশ করুক৷’ 6 ফীষ্ট জেরুশালেমে প্রায় আট দশদিন থাকার পর কৈসরিয়ায় চলে গেলেন৷ পরের দিন তিনি বিচারালয়ে নিজের আসনে বসে পৌলকে সেখানে হাজির করতে হুকুম করলেন৷ 7 পৌল সেখানে এলে জেরুশালেম থেকে য়েসব ইহুদীরা এসেছিল তারা চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এমন সব জঘন্য অপরাধের কথা বলতে লাগল, যার কোন প্রমাণ তারা নিজেরাই দিতে পারল না৷ 8 পৌল আত্মপক্ষ সমর্থন করে বললেন, ‘আমি ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থা বা মন্দির কিংবা কৈসরের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ করি নি৷’ 9 কিন্তু ইহুদীদের কাছে সুনাম পাবার আশায় খ্রীষ্ট পৌলকে বললেন, ‘তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে সেখানে আমার সামনে এসব বিষয়ে তোমার বিচার হয় তা চাও?’ 10 পৌল বললেন, ‘আমি কৈসরের বিচারালয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এখানেই আমার বিচার হওয়া উচিত৷ আমি ইহুদীদের বিরুদ্ধে কিছুই করি নি, একথা আপনি ভালোভাবেই জানেন৷ 11 আমি যদি কোন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হই ও মৃত্যুদণ্ড পাবার য়োগ্য হই, তবে আমি মৃত্যু থেকে রক্ষা পাবার জন্য বলব না৷ কিন্তু এরা আমার বিরুদ্ধে য়েসব অভিযোগ করছে, এসব যদি সত্য না হয় তবে এদের হাতে কেউ আমাকে তুলে দিতে পারবে না, কারণ আমি কৈসরের কাছে আপীল করছি!’ 12 তখন খ্রীষ্ট তাঁর পরামর্শদাতাদের সঙ্গে কথা বললেন, পরে ফীষ্ট পৌলকে বললেন, ‘তুমি কৈসরের কাছে আপীল করেছ, তোমাকে কৈসরের কাছে পাঠানো হবে৷’ 13 এর কিছু দিন পর রাজা আগ্রিপ্প ও বর্ণীকী কৈসরিয়ায় এসে খ্রীষ্টের সঙ্গে দেখা করলেন৷ 14 তাঁরা সেখানে বেশ কিছু দিন থাকলেন৷ রাজার কাছে ফীষ্ট পৌলের বিষয় এইভাবে বললেন, ‘ফীলিক্স কোন একজন লোককে এখানে বন্দী করে রেখেছেন৷ 15 আমি যখন জেরুশালেমে ছিলাম, সেই সময় ইহুদীদের প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তার বিরুদ্ধে আবেদন করে বিচার ও শাস্তি চেয়েছিল৷ 16 আমি তাদের বলেছিলাম য়ে, ‘যার নামে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, সে যতক্ষণ পর্যন্ত না অভিযোগকারীদের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পাচ্ছে, ততক্ষণ কোন লোককে তাদের হাতে তুলে দেওয়া রোমাণদের নিয়ম নয়৷ 17 আর তারা আমার সঙ্গে এখানে এলে, আমি আর দেরী না করে, পরদিনই সেই বন্দীকে বিচারের জন্য আমার বিচারালয়ে আনাই৷ 18 যখন তারা দাঁড়িয়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করতে গেল তখন তাঁর বিরুদ্ধে য়ে রকম দোষের কথা আমি অনুমান করেছিলাম, তার অভিযোগকারীরা সেই রকম কোন দোষই দেখাতে পারল না৷ 19 তার সাথে তাদের ধর্ম সম্বন্ধে এবং যীশু নামে এক ব্যক্তিযিনি মারা গিয়েছিলেন কিন্তু যাকে পৌল জীবিত বলে প্রচার করত সে সম্বন্ধে কিছু মতপার্থক্য ছিল৷ 20 আমি বুঝে উঠতে পারলাম না য়ে এই ধরণের প্রশ্নগুলির উত্তর কিভাবে অনুসন্ধান করা হবে, তাই তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে সেখানে এই বিষয়ের বিচার হোক তাই চাও?’ 21 কিন্তু পৌল কৈসরের কাছে বিচার চেয়ে কারাগারে থাকার জন্য আপীল করায়, যতদিন না আমি তাকে কৈসরের কাছে পাঠাতে পারছি ততদিন কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছি৷’ 22 আগ্রিপ্প বললেন, ‘হ্যাঁ, আমিও নিজে তার কথা শুনতে চেয়েছিলাম৷’ফীষ্ট বললেন, ‘বেশ, কালই শুনবেন৷’ 23 পরদিন রাজা আগ্রিপ্প ও বর্নীকী খুব জাঁকজমকের সাথে এসে সভা ঘরে ঢুকলেন, তাঁদের সঙ্গে সেনাপতিরা ও শহরের গন্যমান্য লোকেরাও ছিলেন৷ ফীষ্টের হুকুমে পৌলকে সেখানে নিয়ে আসা হল৷ 24 তখন ফীষ্ট বললেন, ‘হে রাজা আগ্রিপ্প ও আমাদের সঙ্গে যাঁরা উপস্থিত আছেন তারা এই লোককে দেখছেন, যার বিরুদ্ধে এখানকার ও জেরুশালেমের সমস্ত ইহুদী সমাজ আমার কাছে চিত্কার করছে য়ে এই লোকের আর বেঁচে থাকা উচিত্ নয়৷ 25 কিন্তু এর মৃত্যুদণ্ডের য়োগ্য কোন অপরাধই আমি পাই নি৷ এ যখন নিজে সম্রাটের কাছে আপীল করেছে, তখন আমি সেখানে একে পাঠাব বলে স্থির করেছি৷ 26 কিন্তু সম্রাটের কাছে এর বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কি বলব তা জানি না৷ সেইজন্য আমি আপনাদের সামনে, বিশেষ করে রাজা আগ্রিপ্পর সামনে একে হাজির করেছি৷ য়েন একে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আমি কিছু পাই য়ে সম্বন্ধে লিখতে পারি৷ 27 কারণ বন্দীকে পাঠাবার সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ না দেওয়া আমি যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি না৷’
1 আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, ‘এখন আত্ম সমর্থন করতে তোমার যা বলার আছে তা তোমাকে বলতে অনুমতি দেওয়া হল৷’তখন পৌল হাত প্রসারিত করে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে থাকলেন৷ 2 তিনি বললেন, ‘হে রাজা আগ্রিপ্প, ইহুদীরা আমার বিরুদ্ধে য়ে সব অভিযোগ এনেছে, সে বিষয়ে আজ আপনার সামনে আমি আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি৷ 3 বিশেষ করে ইহুদীদের রীতি-নীতি ও নানা প্রশ্নের বিষয়ে আপনি অভিজ্ঞ, এইজন্য আপনার কাছে কথা বলার সুয়োগ পেয়ে আমি বড়ই আনন্দিত৷ তাই আপনাকে অনুরোধ করছি আপনি ধৈর্য্য ধরে আমার কথা শুনুন৷ 4 ‘তারা জানে য়ে শুরু থেকেই আমি এই জেরুশালেমে আমার স্বজাতির মধ্যেই জীবন কাটিয়েছি এবং আমি কিভাবে জীবন-যাপন করেছি৷ 5 এই ইহুদীরা দীর্ঘদিন ধরে আমায় চেনে; আর তারা যদি ইচ্ছা করে তবে এ সাক্ষ্য দিতে পারে য়ে আমি একজন ফরীশীর মতোই জীবন-যাপন করেছি৷ ফরীশীরাই ইহুদী ধর্মের বিধি-ব্যবস্থা অন্যান্য দলের চাইতে সূক্ষ্মভাবে পালন করে৷ 6 আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে সব পূর্ণ হবার প্রত্যাশায় আছি বলেই আজ আমার বিচার হচ্ছে৷ 7 আমাদের বারো বংশ দিনরাত একাগ্রভাবে উপাসনা করতে করতে সেই প্রতিশ্রুতির ফল পাবার প্রত্যাশা করছে৷ আর হে রাজা আগ্রিপ্প, ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাতে প্রত্যাশা করার জন্যই ইহুদীরা আমার ওপর দোষারোপ করছে৷ 8 ঈশ্বর মৃতদের পুনরুত্থিত করেন একথা কেন আপনাদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে? 9 আমিও তো মনে করতাম য়ে নাসরতীয় যীশুর নামের বিরুদ্ধে যা কিছু করা সন্ভব তা করাই আমার অবশ্য কর্তব্য; 10 আর জেরুশালেমে আমি তাই করতাম৷ আমি প্রধান যাজকদের কাছ থেকে কর্তৃত্ত্বের অধিকার নিয়ে বহু বিশ্বাসীকে কারাগারে পুরেছি আর তাদের মৃত্যুদণ্ডের সময় আমি আমার পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি৷ 11 সমস্ত সমাজ-গৃহে আমি প্রায়ই তাদের শাস্তি দিয়ে জোর করে যীশুর নিন্দা করাবার চেষ্টা করতাম৷ তাদের বিরুদ্ধে আমার ক্ষোভ এতই প্রচণ্ড হয়ে উঠেছিল য়ে বিদেশের শহরগুলিতে গিয়েও আমি তাদের নির্য়াতন করতাম৷ 12 ‘এই কারণেই একবার আমি প্রধান যাজকদের কাছ থেকে ক্ষমতা ও হুকুমনামা নিয়ে দম্মেশকে যাচ্ছিলাম৷ 13 পথে একদিন দুপুরবেলায়, হে মহারাজ আমি দেখলাম সূর্যের চেয়েও এক উজ্জ্বল আলো আকাশ থেকে আমার ও আমার সহযাত্রীদের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল৷ 14 আমরা মাটিতে পড়ে গেলাম, আর এক রব শুনতে পেলাম যা ইব্রীয় ভাষায় আমায় বলছে, ‘শৌল, শৌল, আমায় নির্য়াতন করছ কেন? আমার বিরুদ্ধে গিয়ে তুমি নিজেরই ক্ষতি করছ৷’ 15 তখন আমি বললাম, ‘প্রভু, আপনি কে? প্রভু বললেন, ‘আমি যীশু, যাকে তুমি নির্য়াতন করছ৷ 16 তুমি নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াও! আমার সেবক হবার জন্যই আমি তোমাকে মনোনীত করেছি৷ তুমি অন্য়ের কাছে আমার সাক্ষী হবে৷ তুমি য়ে য়ে বিষয় আজ দেখলে ও ভবিষ্যতে যা যা আমি তোমায় দেখাব, সে সব সকল লোকের কাছে সাক্ষী দাও৷ এইজন্যই তোমার কাছে আজ আমি নিজে দেখা দিয়েছি৷ 17 তোমার আপন লোক ইহুদীদের হাত থেকে তোমায় আমি রক্ষা করব৷ আর আমি তোমাকে অইহুদীদের কাছে পাঠাচ্ছি৷ 18 তুমি তাদের চোখ খুলে দেবে য়েন তারা সত্য দেখে ও অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরে আসে; আর শয়তানের কর্ত্তৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে ঈশ্বরের প্রতি ফিরলে তাদের সব পাপ ক্ষমা হবে৷ আমার উপর বিশ্বাস করে যাঁরা পবিত্র হয়েছে, তারা তাদের সহভাগী হবে৷” 19 পৌল বলতে থাকলেন, ‘হে মহারাজ আগ্রিপ্প, আমি সেই স্বর্গীয় দর্শনের অবাধ্য হই নি৷ 20 আমি লোকদের বলতে শুরু করলাম য়েন তারা মন-ফেরায় ও ঈশ্বরের দিকে ফেরে৷ আমি তাদের বললাম তারা য়েন ভাল কাজ করে প্রমাণ দেয় য়ে সত্যি করে মন ফিরিয়েছে৷ প্রথমে আমি এসব কথা দম্মেশকের লোকদের কাছে প্রচার করলাম৷ পরে আমি এগুলি জেরুশালেমে ও যিহূদিয়ার সর্বত্র এবং অইহুদীদের কাছেও বললাম৷ 21 এই জন্যই যখন আমি মন্দিরে ছিলাম, ইহুদীরা সেখান থেকে আমাকে ধরে এনে হত্যা করতে চেয়েছিল৷ 22 কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি ঈশ্বরের সাহায্য পেয়েছি৷ তাই এখানে ছোট ও বড় সকলের সামনে দাঁড়িয়ে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি৷ মোশি ও ভাববাদীরা যা ঘটবে বলে গেছেন, সেটা ছাড়া আমি আর অন্য কোন কথা বলছি না৷ 23 তাঁরা বলে গেছেন, খ্রীষ্টকে মৃত্যুভোগ করতে হবে ও মৃতদের মধ্য থেকে তিনিই হবেন প্রথম পুনরুত্থিত, ইহুদী কি অইহুদী সবার কাছে বিশিষ্ট জ্যোতির বার্তা নিয়ে আসবেন৷’ 24 পৌল যখন এভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করছেন তখন ফীষ্ট চিত্কার করে বলে উঠলেন, ‘পৌল তুমি পাগল! অত্যধিক অধ্যয়নের ফলে তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে!’ 25 পৌল বললেন, ‘হে মহামান্য ফীষ্ট, আমি পাগল নই বরং আমি যা বলছি তা সত্য ও বোধগম্য৷ 26 রাজা আগ্রিপ্প এবিষয়ে সবই জানেন৷ তার সামনে আমি সাহসের সঙ্গে একথা বলছি৷ আমি সুনিশ্চিত য়ে, এসব বিষয় তিনি শুনেছেন, কারণ এসব এমন প্রকাশ্য স্থানে ঘটেছে য়েন তা সকলে দেখতে পায়৷ 27 আগ্রিপ্প, আপনি কি ভাববাদীরা যা লিখে গেছেন তা বিশ্বাস করেন? আমি জানি আপনি তা করেন৷’ 28 তখন আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, ‘তুমি কি মনে করছ, আমাকে এত অল্প সময়ের মধ্যে খ্রীষ্টীয়ান করতে পারবে?’ 29 পৌল বললেন, ‘ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি অল্প সময়ের মধ্যে হোক কি অধিক সময়ের মধ্যে হোক, সেটা বড় কথা নয়, কেবল আপনি নন, আজ যত লোক আমার কথা শুনছেন তারা সকলেই য়েন আমারই মত হন; কেবল বন্দীত্বের শেকল ছাড়া!’ 30 তখন রাজা, রাজ্যপাল ও বর্ণীকী আর তাঁদের সঙ্গে যাঁরা বসেছিলেন সকলে উঠে পড়লেন৷ 31 আর অন্য জায়গায় গিয়ে পরস্পর আলোচনা করে বললেন, ‘প্রাণদণ্ড বা কারাগারে দেবার মতো কোন অপরাধই এই লোকটা করে নি৷’ 32 আগ্রিপ্প ফীষ্টকে বললেন, ‘এ যদি কৈসরের কাছে আপীল না করত, তবে একে আমরা মুক্তি দিতে পারতাম৷’
1 যখন ঠিক হল য়ে আমরা জাহাজে করে ইতালিতে যাব, তখন পৌল ও অন্য কিছু বন্দীকে রাজকীয় রক্ষীবাহিনীর সেনাপতি যুলিয়র হাতে তুলে দেওয়া হল৷ 2 আমরা আদ্রামুত্তীয় থেকে আসা একটি জাহাজে উঠলাম; এই জাহাজটির এশিয়া উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল৷ থিষলনীকীয় থেকে আরিষ্টার্খ নামে একজন মাকিদনিযান আমাদের সঙ্গে ছিলেন৷ 3 পরের দিন আমাদের জাহাজ সীদোনে পৌঁছল৷ যুলিয় পৌলের সঙ্গে বেশ ভাল ব্যবহার করলেন৷ তিনি পৌলকে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত্ করতে যাবার অনুমতি দিলেন৷ সেই বন্ধুরা পৌলের প্রযোজনীয় সামগ্রী য়োগাতেন৷ 4 সেখান থেকে আমরা জাহাজ খুলে সীদোন শহর ছেড়ে চললাম৷ প্রতিকূল বাতাসের জন্য কূপ্র দ্বীপের কাছাকাছি অঞ্চল দিয়ে চললাম; 5 আর কিলিকিয়ার ও পাম্ফুলিয়ার প্রদেশ ছেড়ে সমুদ্রপথে লুকিয়া প্রদেশের মুরা বন্দরে এলাম৷ 6 সেখানে সেনাপতি ইতালিতে যাবার জন্য আলেকসান্দ্রীয়ায় এক জাহাজ দেখতে পেয়ে আমাদের সেই জাহাজে তুলে দিলেন৷ 7 বহুদিন ধরে আমরা খুব আস্তে আস্তে চললাম এবং বহুকষ্টে ক্লীদে এসে পৌঁছালাম৷ বাতাসের কারণে আমরা আর এগোতে পারলাম না, তাই সলমোনী বন্দরের উল্টো দিকে ক্রীতি দ্বীপের ধার ঘেঁসে চললাম৷ 8 পরে বহুকষ্টে উপকূলের ধার ঘেঁসে চলতে চলতে লাসেয়া শহরের কাছে ‘সুন্দর’ পোতাশ্রয়ে এসে পৌঁছালাম৷ 9 এইভাবে বহু সময় নষ্ট হল, আর জলযাত্রা তখন খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল, এদিকে উপবাস পর্বের সময়ও চলে গেল৷ তাই পৌল তাদের সাবধান করে দিয়ে বললেন, 10 ‘মহাশয়রা, আমি দেখছি, এই যাত্রায় অনিষ্ট ও অনেক ক্ষতি হবে, তা য়ে কেবল মালের বা জাহাজের হবে তাই নয়, এমন কি আমাদের জীবনেরও ক্ষতি হবে৷’ 11 কিন্তু সেনাপতি পৌলের কথার চেয়ে জাহাজের কাপ্তেন ও তার মালিকের কথার গুরুত্ব দিলেন৷ 12 সেই বন্দরটি শীতকাল কাটাবার পক্ষে উপযুক্ত না হওয়াতে জাহাজের অধিকাংশ লোক একমত হলেন য়েন জাহাজ খুলে যাত্রা শুরু করা হয় যাতে কোন রকমে ফৈনীকায় পৌঁছে সেখানে তারা শীতকালটা কাটাতে পারে৷ সেই স্থানটি ছিল দক্ষিণ পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিম অভিমুখী ক্রীত দ্বীপের একটি বন্দর৷ 13 আর যখন অনুকূল দক্ষিণা বাতাস বইতে শুরু করল তখন তাদের মনে হল তারা যা চাইছিল তা পেয়েছে; তাই তারা নোঙ্গর তুলে ক্রীতের ধার ঘেঁসে চলতে শুরু করল৷ 14 কিন্তু এর কিছু পরেই দ্বীপের ভেতর থেকে প্রচণ্ড এক ঘূর্ণি ঝড় উঠল, এই ঝড়কে ‘ঈশান বাযু’ বলে৷ 15 আমাদের জাহাজ সেই ঝড়ের মধ্যে পড়ল, ঝড় কাটিয়ে য়েতে পারল না৷ তাই আমরা আমাদের জাহাজকে ভেসে য়েতে দিলাম৷ 16 কৌদা নামে এক ছোট দ্বীপের আড়ালে চলার সময় জাহাজের সঙ্গে য়ে ছোট ডিঙ্গিটা ছিল তা আমরা বহু কষ্টে টেনে তুলে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচালাম৷ 17 এটা তোলার পর লোকেরা জাহাজটাকে মোটা দড়ি দিয়ে ভাল করে বাঁধল৷ তারা ভয় করছিল য়ে জাহাজটি হয়তো সুর্ত্তীর চোরা বালিতে গিয়ে পড়তে পারে, তাই তারা পাল নামিয়ে নিয়ে জাহাজটাকে বাতাসের টানে চলতে দিল৷ 18 ঝড়ের প্রকোপ বাড়তে থাকায়, পর দিন খালাসীরা জাহাজের খোল থেকে ভারী ভারী মাল জলে ফেলে দিতে লাগল৷ 19 তৃতীয় দিনে তারা নিজেরাই হাতে করে জাহাজের কিছু সাজ-সরঞ্জাম জলে ফেলে দিল৷ 20 অনেক দিন যাবত্ যখন সূর্য় কি নক্ষত্রগণের মুখ দেখা গেল না, আর ঝড়ও প্রচণ্ড উত্তাল হতে থাকল, তখন শেষ পর্যন্ত আমাদের বাঁচার আশা রইল না৷ 21 অনেক দিন ধরেই সকলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করেছিল৷ তখন পৌল তাদের মাঝে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘মহাশয়েরা, আমার কথা শুনে ক্রীতি থেকে জাহাজ না ছাড়া আপনাদের উচিত ছিল, তাহলে আজকের এই ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পারতেন৷ 22 কিন্তু এখনও আমি বলছি, সাহস করুন, একথা জানবেন আপনাদের কারোর প্রাণহানি হবে না, শুধু জাহাজটি হারাতে হবে৷ 23 কারণ আমি য়ে ঈশ্বরের উপাসনা করি সেই ঈশ্বরের এক স্বর্গদূত গত রাত্রে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, 24 ‘পৌল ভয় পেও না! তোমাকে কৈসরের সামনে অবশ্যই দাঁড়াতে হবে৷ ঈশ্বর তোমার জন্য এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন য়ে তিনি তোমার সহযাত্রীদের প্রাণ রক্ষা করবেন৷’ 25 তাই মহাশয়রা, আপনারা সাহস করুন, কারণ ঈশ্বরের ওপর আমার বিশ্বাস আছে য়ে আমাকে যা বলা হয়েছে ঠিক সেরকমই ঘটবে৷ 26 কিন্তু কোন দ্বীপে গিয়ে আমাদের আছড়ে পড়তে হবে৷’ 27 এইভাবে ঝড়ের মধ্যে চৌদ্দ রাত আদ্রিয়া সমুদ্রে ইতস্ততঃ ভাসমান অবস্থায় থাকার পর মাঝ রাতে নাবিকদের মনে হল য়ে জাহাজটি কোন ডাঙ্গার দিকে এগিয়ে চলেছে৷ 28 সেখানে তারা জলের গভীরতা মাপলে দেখা গেল তা একশো কুড়ি ফুট৷ এর কিছু পরে আবার জল মাপলে জলের গভীরতা নব্বুই ফুটে দাঁড়াল৷ 29 তারা ভয় করতে লাগল য়ে জাহাজটি হয়তো কিনারে পাথরের গায়ে ধাক্কা খাবে৷ তাই নাবিকেরা জাহাজের পেছন দিক থেকে চারটি নোঙ্গর নামিয়ে দিল, প্রার্থনা করল য়েন শীঘ্র ভোর হয়৷ 30 নাবিকদের মধ্যে কেউ কেউ জাহাজ ছেড়ে পালাবার মতলব করল, তাই নোঙ্গর ফেলার আছিলায় জাহাজের মধ্য থেকে ডিঙ্গিখানি নীচে নামিয়ে দিল৷ 31 কিন্তু পৌল সেনাপতি ও সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘এই লোকেরা যদি জাহাজে না থাকে তবে আপনারা রক্ষা পাবেন না৷’ 32 তখন সৈন্যরা ডিঙ্গির দড়ি কেটে দিল, আর তা জলে গিয়ে পড়ল৷ 33 এরপর ভোর হয়ে এলে পৌল সকলকে কিছু খেয়ে নেবার জন্য অনুরোধ করে বললেন, ‘আজ চৌদ্দ দিন হল আপনারা অপেক্ষা করে আছেন, কিছু না খেয়ে উপোস করে আছেন৷ 34 আমি আপনাদের অনুরোধ করছি কিছু খেয়ে নিন, বেঁচে থাকার জন্য এর প্রযোজন আছে, কারণ আপনাদের কারোর একগাছি চুলেরও ক্ষতি হবে না৷’ 35 এই কথা বলে পৌল রুটি নিয়ে তাদের সকলের সামনে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, আর তা ভেঙ্গে খেতে শুরু করলেন৷ 36 তখন সকলে উত্সাহ পেয়ে খেতে শুরু করল৷ 37 আমরা মোট দুশ ছিয়াত্তর জন লোক জাহাজে ছিলাম৷ 38 সকলে পরিতৃপ্তির সঙ্গে খাবার পর বাকী শস্য সমুদ্রে ফেলে দিয়ে জাহাজটি হাল্কা করা হল৷ 39 দিন হলে পর তারা সেই জায়গাটা চিনতে পারল না; কিন্তু এমন এক খাড়ি দেখতে পেলযার বড় বালুতট ছিল৷ তারা ঠিক করল যদি সন্ভব হয় তবে ঐ বালুতটের ওপরে জাহাজটা তুলে দেবে৷ 40 এই আশায় তারা নোঙ্গর কেটে দিল আর তা সমুদ্রেই পড়ে রইল৷ এরপর হালের বাঁধন খুলে দিয়ে বাতাসের সামনে পাল তুলে সেই বেলাভূমি লক্ষ্য করে এগিয়ে চলল৷ 41 কিন্তু একটু এগোতেই তারা বালিয়াড়িতে ধাক্কা পেল, জাহাজের সামনের দিকটা বালিতে বসে গিয়ে অচল হয়ে পড়ল, ফলে ঢেউয়ের আঘাতে পিছনের দিকটা ভেঙ্গে য়েতে লাগল৷ 42 তখন সৈন্যরা বন্দীদের হত্যা করার জন্য ঠিক করল, পাছে তাদের কেউ সাঁতার কেটে পালায়৷ 43 কিন্তু সেনাপতি পৌলকে বাঁচাবার আশায় তাদের এই কাজ করতে নিষেধ করলেন, হুকুম দিলেন য়েন যাঁরা সাঁতার জানে তারা ঝাঁপ দিয়ে আগে ডাঙ্গায় ওঠে৷ 44 বাকী সকলে য়েন জাহাজের ভাঙ্গা তক্তা বা কোন কিছু ধরে কিনারে য়েতে চেষ্টা করে৷ এইভাবে সকলেই নিরাপদে তীরে এসে পৌঁছলো৷
1 এইভাবে সকলে নিরাপদে তীরে পৌঁছে জানতে পারলাম য়ে আমরা মিলিতা দ্বীপে উঠেছি৷ 2 সেখানকার লোকেরা আমাদের সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করল৷ বৃষ্টি পড়ার দরুন খুব ঠাণ্ডা হওয়ায় তারা আগুন জে্বলে আমাদের সকলকে স্বাগত জানাল৷ 3 পৌল এক বোঝা শুকনো কাঠ য়োগাড় করে এনে আগুনের ওপর ফেলে দিলে আগুনের হল্কায় একটা বিষধর সাপ বেরিয়ে এসে পৌলের হাতে জড়িয়ে ধরল৷ 4 তখন সেই দ্বীপের লোকেরা তার হাতে সাপটাকে ঝুলতে দেখে বলাবলি করতে লাগল, ‘এ লোকটা নিশ্চয় খুনী, সমুদ্রের ঝড়ের হাত থেকে বাঁচলেও ন্যায় একে বাঁচতে দিল না৷’ 5 কিন্তু পৌল হাত ঝেড়ে সেই সাপটাকে আগুনের মধ্যে ফেলে দিলেন, তাঁর কোন ক্ষতি হল না৷ 6 এই ব্যাপার দেখে তারা মনে করল হয় পৌলের শরীর ফুলে উঠবে, নয়তো তিনি হঠাত্ মারা যাবেন৷ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরও তাঁর কিছুই ক্ষতি হল না দেখে তারা পৌল সম্বন্ধে তাদের মত বদল করে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “ইনি নিশ্চয়ই দেবতা৷’ 7 সেই জায়গার কাছেই দ্বীপের প্রধান কর্মকর্তা জমিদার পুব্লিয় থাকতেন৷ তিনি তাঁর বাড়িতে আমাদের সাদরে নিয়ে গেলেন৷ তিনি আমাদের প্রতি খুব ভাল ব্যবহার করলেন আর তিন দিন ধরে আমাদের আতিথ্য করলেন৷ 8 সেই সময় পুব্লিয়ের বাবা খুব অসুস্থ ছিলেন৷ তিনি জ্বর ও আমাশা রোগে শয্যাশায়ী ছিলেন৷ পৌল তাঁকে দেখার জন্য ভেতরে গেলেন৷ এরপর তিনি প্রার্থনা করে তাঁর ওপর দুহাত রাখলে তিনি সুস্থ হয়ে গেলেন৷ 9 এই ঘটনার পর ঐ দ্বীপে অন্য যত রোগী ছিল তারা পৌলের কাছে এসে রোগ মুক্ত হল৷ 10 ঐ দ্বীপের লোকেরা আমাদের অনেক উপহার দিয়ে সম্মান দেখাল, আমরা সেখানে তিন মাস থাকলাম আর আমাদের যাত্রা পথের জন্য যা যা প্রযোজন সে সব জিনিস এনে তারা জাহাজে তুলে দিল৷তিন মাস পর আমরা আলেকসান্দ্রীয় এক জাহাজে উঠে যাত্রা করলাম, সেই দ্বীপে শীতকাল এসে পড়ায় ঐ জাহাজটি নোঙ্গর করে রাখা ছিল৷ জাহাজটিতে ‘যমজ দেবের মূর্তি’ খোদাই করা ছিল৷ 11 12 আমরা প্রথমে সুরাকুষে এলাম, সেখানে তিন দিন থাকলাম৷ 13 সেখান থেকে যাত্রা করে আমরা রীগিয়ে পৌঁছলাম৷ পরদিন দক্ষিণা বাতাস বইতে শুরু করলে আমরা জাহাজ ছাড়তে পারলাম, এবং দ্বিতীয় দিনে পূতিয়লীতে পৌঁছলাম৷ 14 সেখানে আমরা কয়েকজন ভাইয়ের দেখা পেলাম৷ তাঁরা সেখানে সাতদিন থাকার জন্য আমাদের অনুরোধ করলেন৷ এইভাবে আমরা রোমে এসে পৌঁছলাম৷ 15 রোমের ভাইয়েরা আমাদের কথা জানতে পেরে আপ্পিয়ের বাজার ও তিন সরাই পর্যন্ত এগিয়ে এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করলেন৷ তাঁদের দেখে পৌল ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন ও উত্সাহ বোধ করতে লাগলেন৷ 16 রোমে পৌল একা থাকার অনুমতি পেলেন; কিন্তু একজন সৈনিককে তাঁর প্রহরায় রাখা হল৷ 17 তিন দিন পর তিনি ইহুদীদের প্রধান প্রধান লোকদের এক সভায় আহ্বান করলেন৷ তারা সমবেত হলে, তিনি তাদের বললেন, ‘আমার ইহুদী ভাইয়েরা, যদিও আমি আমার নিজের লোকদের বিরুদ্ধে বা আমাদের পিতৃপুরুষদের দেওয়া রীতি-নীতির বিরুদ্ধে কিছুই করি নি, তবু জেরুশালেমের এক বন্দী হিসাবে আমাকে রোমানদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল৷ 18 তারা আমার বিচার করে, আর মৃত্যুদণ্ডের য়োগ্য কোন দোষ আমার মধ্যে না পেয়ে আমাকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল৷ 19 কিন্তু স্থানীয় ইহুদীরা তার বিরোধিতা করায় আমি কৈসরের কাছে আপীল করতে বাধ্য হলাম৷ আমি একথা বলছি না য়ে আমার স্বজাতির লোকরা কোন অন্যায় করেছে৷ 20 এই শৃঙ্খলে বন্দী আছি বলে আমি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে ও আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কারণ আমি ইস্রায়েলের প্রত্যাশাতে বিশ্বাসী৷’ 21 ইহুদী নেতারা পৌলকে বললেন, ‘যিহূদিয়া থেকে আমরা আপনার বিষয়ে কোন চিঠি পাই নি৷ ভাইদের মধ্যে থেকেও কেউ এখানে এসে আপনার বিষয়ে খারাপ কোন খবর দেয় নি বা কথাও বলে নি৷ 22 কিন্তু আপনার মত কি তা আপনার মুখ থেকেই আমরা শুনতে চাই, কারণ এই দলের বিষয়ে আমরা জানি য়ে লোকেরা সর্বত্র এর বিরুদ্ধে বলে থাকে৷’ 23 পরে তাঁরা একটা দিন স্থির করে সেই দিনে অনেকে তাঁর বাসায় এলেন৷ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি তাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বললেন, বোঝালেন ও সাক্ষ্য দিলেন৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের গ্রন্থগুলি থেকে তিনি যীশুর বিষয় তাঁদের বোঝাতে চেষ্টা করলেন৷ 24 তাঁর কথায় বেশ কিছু ইহুদী বিশ্বাস করল আবার অনেকে তা বিশ্বাস করল না৷ 25 এইভাবে তাদের মধ্যে মতের মিল না হওয়ায় তারা য়ে যার মত চলে য়েতে শুরু করল৷ তাদের যাবার আগে পৌল তাদের এই কথাটি বলেছিলেন: ‘পবিত্র আত্মা ভাববাদী যিশাইয়র মাধ্যমে আপনাদের পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে ভালই বলেছিলেন৷ য়েমন: 26 ‘এই লোকদের কাছে যাও, আর তাদের বল, তোমরা শুনবে আর শুনবে, কিন্তু তোমরা বুঝবে না৷ তোমরা কেবল তাকিয়ে থাকবে কিন্তু দেখতে পাবে না৷ 27 কারণ এই লোকেদের অন্তঃকরণ অসাড় হয়ে গেছে, তাদের কান আছে বটে কিন্তু তারা শুনতে পায় না৷ এই লোকেরা সত্যের প্রতি চোখ বুজে রয়েছে৷ এইসব ঘটেছে য়েন লোকেরা তাদের চোখ দিয়ে দেখতে না পায়, তাদের কান দিয়ে শুনতে না পায় ও হৃদয় দিয়ে উপলধ্ধি না করে৷ এইসব ঘটেছে য়েন তারা আমার কাছে ফিরে না আসে, পাছে আমি তাদের আরোগ্য দান করি৷’ যিশাইয় 6:9-10 28 ‘তাই ইহুদী ভাইয়েরা আপনারা জেনে রাখুন, ঈশ্বরের দেওয়া এই পরিত্রাণ অইহুদীদের কাছেও পাঠানো হল, আর তারা তা শুনবে!’ 29 30 পৌল তাঁর নিজের ভাড়া বাড়িতে পুরো দুই বছর থাকলেন, যতলোক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসত, তিনি তাদের সকলকে সাদরে গ্রহণ করতেন৷ 31 তিনি সম্পূর্ণ সাহসের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে প্রচার করতেন৷ তিনি প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে শিক্ষা দিতেন এবং কেউ তাঁকে প্রচারে বাধা দিত না৷
1 যীশু খ্রীষ্টের দাস পৌলের কাছ থেকে ঈশ্বর আমাকে প্রেরিত হবার জন্য আহ্বান করেছেন৷ সমস্ত মানুষের কাছে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারের জন্য আমাকে মনোনীত করা হয়েছিল৷ 2 ঈশ্বর বহুপূর্বেই মানুষের কাছে এই সুসমাচার পৌঁছে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ এই প্রতিশ্রুতি দিতে ঈশ্বর তাঁর ভাববাদীদের ব্যবহার করেছিলেন৷ পবিত্র শাস্ত্রে এই প্রতিশ্রুতির কথা লেখা ছিল৷ 3 ঈশ্বরের পুত্র আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ই হল এই সুসমাচার৷ মানবরূপে তিনি দাযূদের বংশে জন্মেছিলেন; কিন্তু যীশু খ্রীষ্ট য়ে ঈশ্বরের পুত্র তা পবিত্র আত্মার মাধ্যমে দেখানো হল৷ মৃতদের মধ্য হতে মহাপরাক্রমে তাঁর পুনরুত্থানও প্রমাণ করে য়ে তিনি ঈশ্বরের পুত্র৷ 4 5 খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর আমাকে প্রেরিতের এই বিশেষ কাজ দিয়েছেন, য়েন সর্বজাতির লোকদের আমি বিশ্বাস ও বাধ্যতার পথে নিয়ে যাই৷ একাজ আমি খ্রীষ্টের জন্যই করেছি৷ 6 রোমানবাসীরা, তোমরাও তাদের মধ্যে যীশু খ্রীষ্টের আহুত লোক হিসাবে আছ৷ 7 হে রোমনিবাসীগণ, তোমরা যাঁরা ঈশ্বরের পবিত্র লোক হবার জন্য আহুত তাদের সকলকে এই চিঠি লিখছি৷ তোমরা তাঁর ভালবাসার পাত্র৷আমাদের ঈশ্বর পিতা ও প্রভু যীশু খ্রীষ্ট হতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ ও শান্তি নেমে আসুক৷ 8 প্রথমেই আমি তোমাদের সকলের জন্য যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে আমার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি৷ আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই কারণ তাঁর প্রতি তোমাদের এই মহাবিশ্বাসের কথা জগতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে৷ 9 আমার প্রার্থনার সময় প্রতিবারই আমি তোমাদের মনে করি৷ ঈশ্বর জানেন য়ে একথা সত্য৷ আমি তাঁর পুত্র বিষয়ক সুসমাচার লোকদের কাছে প্রচার দ্বারা আত্মাতে ঈশ্বরের উপাসনা করি৷ আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি য়েন তোমাদের সবার কাছে যাবার অনুমতি পাই; আর ঈশ্বর যদি ইচ্ছা করেন তবেই তা সন্ভব হবে৷ 10 11 আমি তোমাদের দেখার জন্য বড়ই উত্সুক৷ তোমাদের শক্তিশালী করে তোলার জন্য আমি সকলকে কিছু আত্মিক বর দিতে চাই৷ 12 আমি বলতে চাই আমাদের য়ে বিশ্বাস রয়েছে, তার দ্বারা য়েন পরস্পর উদ্ধুদ্ধ হই৷ 13 ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা জান আমি বহুবার তোমাদের কাছে য়েতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু বাধা পেয়েছি৷ আমি তোমাদের কাছে য়েতে চেয়েছি যাতে তোমাদের আত্মিকভাবে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করতে পারি৷ অন্যান্য অইহুদী লোকদের আমি য়েমন সাহায্য করেছি, তেমনি আমি তোমাদেরও সাহায্য করতে চাই৷ 14 আমার উচিত সকলের সেবা করা, তা সে গ্রীক হোক বা না হোক, বিজ্ঞ বা মূর্খ হোক্৷ 15 এই কারণেই রোমে তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করবার জন্য আমি এত আগ্রহী৷ 16 সুসমাচারের জন্য আমি গর্ববোধ করি৷ সুসমাচারই হল সেই শক্তি, য়ে শক্তির দ্বারা ঈশ্বর তাঁর বিশ্বাসীদের উদ্ধার করেন, প্রথমে ইহুদীদের পরে অইহুদীদের৷ 17 ঈশ্বর কি করে মানুষকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করেন, তা এই সুসমাচারের মধ্য দিয়েই দেখানো হয়েছে৷ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস দ্বারাই মানুষ ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ বলে গন্য হয়৷ শাস্ত্র য়েমন বলে, ‘বিশ্বাসের দ্বারা য়ে ব্যক্তি ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে সে অনন্ত জীবনের অধিকারী হবে৷’ 18 মানুষ নিজের অধর্ম দিয়ে ঈশ্বরের সত্যকে চেপে রাখে, তাই মানুষের কৃত সকল মন্দ এবং অন্যান্য কাজের জন্য স্বর্গ থেকে মানুষের উপর ঈশ্বরের ক্রোধ প্রকাশ পায়৷ ঈশ্বর সম্পর্কে যা জানা য়েতে পারে তা পরিষ্কারভাবে তারা জেনেছে৷ 19 তাছাড়া মানুষের পক্ষে ঈশ্বরকে যতখানি জানা সন্ভব, তা তো তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন৷ 20 ঈশ্বর সম্পর্কে এমন এমন বিষয় আছে যা মানুষ চোখে দেখতে পায় না, য়েমন তাঁর অনন্ত পরাক্রম ও সেই সমস্ত বিষয়, যার কারণে তিনি ঈশ্বর৷ জগত্ সৃষ্টির শুরু থেকে ঈশ্বরের নানা কাজে সে সব প্রকাশিত হয়েছে৷ ঈশ্বরের সৃষ্ট বস্তুর মধ্যে ঐসব পরিষ্কারভাবেই বোঝা যাচ্ছে৷ তাই মানুষ য়ে মন্দ কাজ করছে তার জন্য উত্তর দেবার পথ তার নেই৷ 21 লোকেরা ঈশ্বরকে জানত, কিন্তু তারা ঈশ্বরের গৌরব গান করে নি এবং তাঁকে ধন্যবাদও দেয় নি৷ লোকদের চিন্তাধারা অসার হয়ে গেছে এবং তাদের নির্বোধ মন অন্ধকারে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে৷ 22 তারা নিজেদের বিজ্ঞ বলে পরিচয় দিলেও তারা মূর্খ৷ 23 তারা চিরজীবি ঈশ্বরের গৌরব করার পরিবর্তে, নশ্বর মানুষ, পাখি, চতুষ্পদের ও সরীসৃপের মূর্ত্তিগুলির উপাসনা করে সেই গৌরব তাদের দিয়েছে৷ 24 তারা ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে ঈশ্বর তাদের খুশি মতো পাপের পথে চলতে দিলেন এবং তাদের অন্তরের কামনা বাসনা অনুসারে মন্দ কাজ করতে ছেড়ে দিলেন৷ ফলে তারা তাদের দেহকে পরস্পরের সঙ্গে অসঙ্গত সংসর্গে ব্যবহার করে য়ৌনপাপে পূর্ণ হয়েছে৷ 25 ঈশ্বরের সত্যকে ফেলে তারা মিথ্যা গ্রহণ করেছে; আর সৃষ্টিকর্তাকে ছেড়ে দিয়ে তারা তাঁর সৃষ্ট বস্তুকে উপাসনা করেছে৷ চিরকাল ঈশ্বরের প্রশংসা করা উচিত৷ আমেন৷ 26 লোকেরা ঐসব মন্দ কাজে লিপ্ত ছিল বলে ঈশ্বর তাদের ছেড়ে দিলেন ও তাদের লজ্জাজনক অভিলাষের পথে চলতে দিলেন৷ নারীরা পুরুষের সঙ্গে স্বাভাবিক সংসর্গ ত্যাগ করে নিজেদের মধ্যে য়ৌন সংসর্গে লিপ্ত হয়েছে৷ 27 ঠিক একইভাবে পুরুষরাও স্ত্রীদের সঙ্গে স্বাভাবিক সংসর্গ ছেড়ে দিয়ে অপর পুরুষের জন্য লালাযিত হয়ে লজ্জাকর কাজ করেছে; আর এই পাপ কাজের শাস্তি তারা তাদের শরীরেই পেয়েছে৷ 28 তারা ঈশ্বরের সম্বন্ধে সত্য জ্ঞান থাকা নিতান্ত গুরুত্বপুর্ণ বলে মনে করে নি৷ তাই ঈশ্বর তাদের ছেড়ে দিয়েছেন যাতে তারা নিজেদের অসার চিন্তায় ডুবে থাকে এবং য়েসব কাজ তাদের করা উচিত নয় তা করে৷ 29 সেই লোকদের জীবন সব রকমের পাপ, মন্দ, স্বার্থপরতা ও হিংসায় ভরা৷ তাদের জীবন দ্বেষ, হত্যা, বিবাদ, মিথ্যা ছল ও দুর্বুদ্ধিতে পূর্ণ৷ 30 তারা ঈশ্বর ঘৃণাকারী, দুর্বিনীত, উদ্ধত, আত্মশ্লাঘী, মন্দ বিষয়ের উত্পাদক, পিতামাতার অনাজ্ঞাবহ৷ 31 তারা নির্বোধ, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী, স্নেহরহিত ও নির্দয়৷ 32 তারা ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা জানে৷ তারা জানে য়ে বিধি-ব্যবস্থা বলে, যাঁরা এমন আচরণ করে তারা মৃত্যুর য়োগ্য৷ কিন্তু তা জেনেও তারা সেই সব মন্দ কাজ করে চলে৷ তাদের ধারণা, যাঁরা ঐসব মন্দ কাজ করে তারা সবাই ঠিকই করেছে৷
1 যদি মনে কর য়ে তুমি ঐ লোকদের বিচার করতে পার, তাহলে ভুল করছ, কারণ তুমিও দোষী৷ তুমি অপরের বিচার কর; কিন্তু তুমিও সেই একইরকম মন্দ কাজ কর৷ কাজেই তুমি যখন অন্যের বিচার কর তখন নিজেকেই দোষী সাব্যস্ত কর৷ 2 যাঁরা মন্দ কাজ করে ঈশ্বর তাদের বিচার করেন; আর তাঁর বিচার ন্যায়সম্মত৷ 3 তুমি তাদের বিচার করে থাক; কিন্তু তুমি নিজেও তাদের মত সেই সব মন্দ কাজ কর৷ তাই এ কথা তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ য়ে ঈশ্বর তোমার বিচার করবেন৷ তুমি তার বিচার এড়াতে পারবে না৷ 4 ঈশ্বর তোমার প্রতি দয়া করেছেন ও সহিষ্ণু হয়েছেন৷ ঈশ্বর অপেক্ষা করছেন য়েন তোমার পরিবর্তন হয়; কিন্তু তুমি তাঁর দয়াকে তুচ্ছ জ্ঞান করছ৷ তুমি হয়তো বুঝতে পারছ না য়ে তোমাদের প্রতি ঈশ্বরের এত দয়ার উদ্দেশ্য হল যাতে তোমরা পাপ থেকে মন-ফিরাও৷ 5 কিন্তু তুমি কঠিনমনা লোক ও অবাধ্য৷ তুমি পরিবর্তিত হতে চাও না, তাই তুমিই তোমার দণ্ডকে ঘোরতর করে তুলছ৷ ঈশ্বরের ক্রোধ প্রকাশের দিনে তুমি সেই দণ্ড পাবে, য়ে দিন লোকে ঈশ্বরের ন্যায়বিচার দেখতে পাবে৷ 6 ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে তার কার্য় অনুসারে ফল দেবেন৷ 7 যাঁরা অবিরাম তাদের সত্ক্রিয়া দ্বারা মহিমা, সম্মান এবং অমরত্বের অন্বেষণ করে, ঈশ্বর তাদের অনন্ত জীবনের অধিকারী করবেন৷ 8 কিন্তু যাঁরা স্বার্থপর, সত্যের অবজ্ঞাকারী এবং মন্দ পথেই চলে, ঈশ্বর তাদের উপর তাঁর ক্রোধ ও শান্তি ঢেলে দেবেন৷ 9 যাঁরা মন্দ কাজ করে তাদের প্রত্যেকের জীবনে ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্লেশ ও পীড়া আসবে৷ প্রথমে ইহুদীদের ও পরে অইহুদীদের উপরে৷ 10 কিন্তু যাঁরা সত্কাজ করে তাদের তিনি মহিমা, সম্মান ও শান্তি দেবেন, প্রথমে ইহুদীদের ও পরে অইহুদীদের৷ 11 ঈশ্বর সকল মানুষকে একইভাবে বিচার করেন৷ 12 যাঁরা বিধি-ব্যবস্থা জানে আর যাঁরা তা কখনই শোনে নি, পাপ করলে তারা সকলে একই পর্য়ায়ে পড়ে৷ বিধি-ব্যবস্থা না জেনে যত লোক পাপ করেছে, তারা সকলেই বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই বিনষ্ট হবে৷ একইভাবে যাদের কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তবু পাপ করে, তাদের বিধি-ব্যবস্থা দ্বারাই বিচার হবে৷ 13 বিধি-ব্যবস্থার কথা শোনার দ্বারা ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া যায় না বরং বিধি-ব্যবস্থা যা বলে তা সর্বদা পালন করলেই ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক হওয়া যায়৷ 14 অইহুদীরা কোন বিধি-ব্যবস্থা পায় নি, অথচ তারা যখন স্বভাবতঃ বিধি-ব্যবস্থা অনুযাযী কাজ করে তখন তারা নিজেরাই নিজেদের বিধি-ব্যবস্থা৷ যদিও তাদের অধিকারে কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই তবুও এটাই সত্য৷ 15 তারা দেখায় য়ে, বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ কোনটা ভাল কোনটা মন্দ, তা তারা তাদের হৃদয় দিয়েই জানে৷ তাদের বিবেকও এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়৷ অনেক সময় তাদের চিন্তাধারাই ব্যক্ত করে য়ে তারা অন্যায় কাজ করছে আর তাতে তারা দোষী হয়৷ কোন কোন সময় তাদের চিন্তাধারা ব্যক্ত করে য়ে তারা ঠিকই করছে, আর তাই তারা দোষী হয় না৷ 16 এসব তখনই ঘটবে যখন ঈশ্বর, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে মানুষের সকল গুপ্ত বিষয়ের বিচার করবেন৷ য়ে সুসমাচার আমি লোকদের কাছে প্রচার করি তা এই কথাই বলছে৷ 17 তোমার অবস্থা কেমন? তুমি নিজেকে ইহুদী বলে পরিচয় দাও এবং বিধি-ব্যবস্থার উপর নির্ভর কর ও গর্ব কর য়ে তুমি ঈশ্বরের কাছাকাছি রয়েছ৷ 18 তুমি জান য়ে ঈশ্বর তোমার কাছ থেকে কোন্ কাজ আশা করেন; আর কোন্টা গুরুত্বপূর্ণ তাও তুমি জান, কারণ তুমি বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষা করেছ৷ 19 যাঁরা ঠিক পথ চেনে না তুমি মনে কর এমন লোকদের তুমি একজন পথ প্রদর্শক৷ তুমি মনে কর যাঁরা অন্ধকারে আছে তুমি তাদের কাছে জ্যোতিস্বরূপ৷ 20 তুমি মনে কর য়ে, যাদের মৌলিক শিক্ষার প্রযোজন তুমি তাদের শিক্ষক হতে পার৷ তোমার কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তাই তুমি মনে কর য়ে তুমি সবই জান ও সব সত্য তোমার কাছেই রয়েছে৷ 21 তুমি অপরকে শিক্ষা দিয়ে থাক; কিন্তু তুমি কি নিজেকেও শিক্ষা দাও? চুরি করো না বলে তুমি অপরকে শিক্ষা দাও৷ কিন্তু তুমি নিজে চুরি কর৷ 22 তুমি বল লোকে য়েন য়ৌন পাপে লিপ্ত না হয়; কিন্তু তুমি নিজে সেই পাপে পাপী৷ তুমি প্রতিমা ঘৃণা কর; কিন্তু মন্দির থেকে চুরি কর৷ 23 তুমি ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা নিয়ে গর্ব কর আবার সেই একই বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করে ঈশ্বরেরই অবমাননা কর৷ 24 শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে: ‘ইহুদীরা, তোমাদের জন্যই অইহুদীরা ঈশ্বরের নিন্দা করে৷’ 25 সুন্নতের মূল্য আছে যদি তুমি বিধি-ব্যবস্থা মান; কিন্তু যদি বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন কর তাহলে তা সুন্নত না হওয়ার সমান৷ 26 অইহুদীরা সুন্নত করায় না; কিন্তু সুন্নত ছাড়াই যদি তারা বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ মেনে চলে তাহলে কি তারা সুন্নতের মতই হবে না? 27 ইহুদীরা, তোমাদের লিখিত বিধি-ব্যবস্থা ও সুন্নত প্রথা আছে; কিন্তু তোমরা বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন কর৷ তাই যাদের দৈহিকভাবে সুন্নত হয়নি অথচ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলে, তারা দেখিয়ে দেবে য়ে তোমরা ইহুদীরা দোষী৷ 28 বাহ্যিকভাবে ইহুদী হলেই প্রকৃত ইহুদী হওয়া যায় না, এবং পূর্ণ অর্থে বাহ্যিক সুন্নত প্রকৃত সুন্নত নয়৷ 29 য়ে অন্তরে ইহুদী সেই প্রকৃত ইহুদী৷ প্রকৃত সুন্নত সম্পন্ন হয় অন্তরে; বিধি-ব্যবস্থায় লিখিত অক্ষরের মাধ্যমে তা হয় না কিন্তু অন্তরে আত্মা দ্বারা সাধিত হয়৷ আত্মার দ্বারা য়ে ব্যক্তির হৃদয়ের সুন্নত হয় সে মানুষের প্রশংসা নয়, ঈশ্বরের প্রশংসা পায়৷
1 তাহলে ইহুদীদের এমন কি সুবিধা আছে যা অন্য লোকদের নেই? সুন্নতেরই বা মূল্য কি? 2 হ্যাঁ, সব দিক দিয়েই ইহুদীদের অনেক সুবিধা আছে৷ তাদের মধ্যে থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই; ঈশ্বর তাঁর শিক্ষা প্রথমে ইহুদীদেরই দিয়েছিলেন৷ 3 একথা ঠিক য়ে কিছু কিছু ইহুদী ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত ছিল না, কিন্তু তাতে কি? তারা অবিশ্বস্ত হয়েছে বলে কি ঈশ্বরও অবিশ্বস্ত হবেন? 4 না, নিশ্চয়ই নয়! সব মানুষ মিথ্যাবাদী হলেও, ঈশ্বর সবসময়ই সত্য৷ শাস্ত্রে য়েমন বলে:‘তুমি তোমার বাক্যেই ন্যায়পরায়ণ প্রতিপন্ন হবে আর বিচারের সময় তোমার জয় হবেই৷’গীতসংহিতা 51:4 5 আমরা যখন অন্যায় করি তখন আরো স্পষ্টভাবে জানা যায় য়ে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ৷ তবে আমরা কি বলব য়ে ঈশ্বর যখন আমাদের শাস্তি দেন তখন অন্যায় করেন? কারো কারো মনে য়েমন চিন্তা থাকে আমি সেই রকম বলছি৷ 6 ঈশ্বর যদি ন্যায়পরায়ণ না হতেন, তবে জগতের বিচার করা তাঁর দ্বারা সন্ভব হত না৷ 7 কেউ আবার বলতে পারেন, ‘যদি আমার মিথ্যার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশ পায় তবে পাপী হিসেবে আমার বিচার কেন হয়?’ 8 তাহলে একথা দাঁড়ায় য়ে, ‘এস আমরা মন্দ কিছু করি যাতে তার থেকে ভাল কিছু পাওয়া যায়৷’ অনেকে আমাদের সমালোচনা করে বলে য়ে আমরা নাকি এমনি শিক্ষা দিই৷ যাঁরা এমন কথা বলে তারা ভুল করছে এবং তারা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবেই৷ 9 তাহলে কি আমরা ইহুদীরা অন্যদের থেকে ভাল? না কখনই না, কারণ আমরা এর আগেই বলেছি য়ে ইহুদী বা অইহুদী সকলেই সমান৷ তারা সকলেই পাপের শক্তির অধীন৷ 10 শাস্ত্রে য়েমন বলে:‘এমন কেউ নেই য়ে ধার্মিক; এমনকি একজনও নেই৷ 11 এমন কেউ নেই য়ে বোঝে৷ এমন কেউ নেই য়ে ঈশ্বরকে পাবার চেষ্টা করে৷ 12 সকলেই ঈশ্বর হতে দূরে সরে গেছে, সকলেই অপদার্থ, কেউই ভাল কাজ করে না, একজনও না!’গীতসংহিতা 14:1-3 13 ‘তাদের মুখ এক উন্মুক্ত কবর; জিভ দিয়ে তারা ছলনার কথা বলে৷’ গীতসংহিতা 5:9‘তাদের বাক্য়ে সাপের বিষ ঢালা৷’গীতসংহিতা 140:3 14 ‘সবসময়ই তাদের মুখে শুধু অভিশাপ ও কটু কথা৷’গীতসংহিতা 10:7 15 ‘রক্ত ঝরানোর কাজে তারা ব্যস্ত; 16 তাদের চরণ য়ে পথেই যায়, সে পথেই রেখে যায় বিনাশ ও বিষাদ৷ 17 শান্তির পথ তারা কখনও চেনে নি৷’যিশাইয় 59:7-8 18 ‘ঈশ্বরের জন্যে তাদের শ্রদ্ধা নেই৷’গীতসংহিতা 36:1 19 তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি য়ে বিধি-ব্যবস্থা যা কিছু বলে তা বিধি-ব্যবস্থার অধীন লোকদেরই বলে; তাই মানুষের আর অজুহাত দেখাবার কিছু নেই, তাদের মুখ বন্ধ৷ সমস্ত জগত, ইহুদী কি অইহুদী, ঈশ্বরের সামনে দোষী৷ 20 কারণ বিধি-ব্যবস্থা পালন করলেই য়ে ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া যায় তা নয়, বিধি-ব্যবস্থা কেবল পাপকে চিহ্নিত করে৷ 21 কিন্তু এখন বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই ঈশ্বর লোকদের তাঁর সম্মুখে ধার্মিক প্রতিপন্ন করার য়ে কাজ করেছেন তা প্রমাণিত হয়েছে৷ বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীরা এই নতুন পথের কথাই বলে গেছেন৷ 22 যীশু খ্রীষ্টের ওপর বিশ্বাস দ্বারাই মানুষ ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ যাঁরাই খ্রীষ্টে বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের সবার জন্যই এই কাজ ঈশ্বর করেন, কারণ তাদের মধ্যে কোন প্রভেদ নেই৷ 23 সকলেই পাপ করেছে এবং ঈশ্বরের মহিমা থেকে বঞ্চিত হয়েছে৷ 24 কিন্তু তারা ঈশ্বরের অনুগ্রহে বিনামূল্যে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্তিলাভ করে ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে৷ 25 ঈশ্বর যীশুকে উত্সর্গীকৃত বলিরূপে আমাদের কাছে দিলেন য়েন যাঁরা তাঁকে বিশ্বাস করে, বিশ্বাসের মাধ্যমেই তাদের পাপ সকল ক্ষমা হয়৷ ঈশ্বর এই কাজের মাধ্যমে দেখান য়ে তিনি সর্বদাই যা ন্যায় তাই করেন৷ অতীতেও তিনি সহিষ্ণুতা দেখিয়েছিলেন এবং লোকদের পাপ অনুযাযী শাস্তি দেন নি; 26 তাঁর পুত্র যীশুকে দান করে আজও তিনি দেখান য়ে তিনি ন্যায়বান৷ ঈশ্বর এই কাজ করেছেন যাতে তিনি বিচারে ন্যায়পরায়ণ থাকেন ও য়ে কেউ যীশুতে বিশ্বাস করে সেও ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ 27 সেজন্য গর্ব করার মত আমাদের কিছুই রইল না, কারণ বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয়, বিশ্বাসের ব্যবস্থা দ্বারা গর্ব করার পথ রুদ্ধ হল৷ 28 সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি মানুষ বিধি-ব্যবস্থা পালনের জন্য যা করে তার দ্বারা নয়, কিন্তু বিশ্বাসেই সে ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ 29 ঈশ্বর কেবল ইহুদীদের ঈশ্বর নন, তিনি অইহুদীদেরও ঈশ্বর৷ 30 ঈশ্বর এক এবং একই উপায়ে সকলকে উদ্ধার করেন৷ তিনি ইহুদীদের বিশ্বাসের মাধ্যমে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন৷ আবার তিনি অইহুদীদের তাদের বিশ্বাসের মাধ্যমে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন৷ 31 তবে বিশ্বাসের পথে চলে কি আমরা বিধি-ব্যবস্থাকে বাতিল করে দিচ্ছি? কখনই না৷ বরং বিশ্বাসের পথে চলে আমরা বিধি-ব্যবস্থার যথার্থ উদ্দেশ্য তুলে ধরি৷
1 তাহলে আমাদের পার্থিব পিতৃপুরুষ অব্রাহামসম্বন্ধে আমরা কি বলব? বিশ্বাস সম্পর্কে তিনি কি শিখেছিলেন? 2 যদি নিজের কাজের জন্য তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হতেন, তবে গর্ব করার মতো তার কিছু থাকত; কিন্তু ঈশ্বরের সাক্ষাতে তিনি গর্ব করতে পারেন নি৷ 3 শাস্ত্রএ ব্যাপারে বলে, ‘অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস করলেন; আর সেই বিশ্বাসের দ্বারাই তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হলেন৷’ 4 য়ে লোক কাজ করে তার মজুরি তো নিছক দান বলে নয় কিন্তু তার ন্যায় পাওনা বলে গন্য হয়৷ 5 কিন্তু য়ে মানুষ কাজ করার বদলে ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে সেক্ষেত্রে তার বিশ্বাসই তাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করে৷ 6 দায়ুদদও সেই একইভাবে বলেছেন ধন্য সেই ব্যক্তি যাকে ঈশ্বর তার কাজের দ্বারা নয় বরং তার বিশ্বাসের দরুন ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন৷ 7 ‘ধন্য তারা, যাদের অন্যায় ক্ষমা করা হয়েছে, যাদের পাপ ঢেকে রাখা হয়েছে৷ 8 ধন্য সেই ব্যক্তি, প্রভু যার পাপ গন্য করেন না৷’ গীতসংহিতা 32:1-2 9 এখন এই সৌভাগ্য কি শুধু যাঁরা সুন্নত হয়েছে তাদের জন্য? অসুন্নতদের জন্যে কি নয়? কারণ আমরা বলি, ‘বিশ্বাস দ্বারাই অব্রাহাম ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছিলেন৷’ 10 কিন্তু অব্রাহামের কোন অবস্থায়, তাঁর সুন্নত হবার আগে, না পরে? আসলে অসুন্নত অবস্থায়ই তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হন৷ 11 অসুন্নত অবস্থায় তিনি বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হন এবং তার চিহ্ন হিসাবে তিনি সুন্নত হয়েছিলেন৷ তাই অসুন্নত হলেও যাঁরা বিশ্বাস করে, অব্রাহাম তাদেরও পিতা; তারাও ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ 12 যাঁরা সুন্নত হয়েছে অব্রাহাম তাদেরও পিতা৷ তাদের সুন্নত হওয়ার সুবাদে য়ে তারা অব্রাহামের সন্তান হয়েছে তা নয়৷ কিন্তু সুন্নত হবার পূর্বে অব্রাহামের য়ে বিশ্বাস ছিল, ঐ লোকেরা যদি অব্রাহামের সেই বিশ্বাসের পথ অনুসরণ করে থাকে তবেই তারা অব্রাহামের সন্তান৷ 13 জগতের উত্তরাধিকারী হবার য়ে প্রতিজ্ঞা ঈশ্বর অব্রাহাম ও তার বংশধরদের কাছে করেছিলেন, তা বিধি-ব্যবস্থার মাধ্যমে আসেনি কিন্তু বিশ্বাসের দ্বারা য়ে ধার্মিকতা লাভ হয় তার মধ্য দিয়েই সেই প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল৷ 14 কারণ যদি বিধি-ব্যবস্থায় নির্ভর কেউ জগতের উত্তরাধিকারী হয় তবে বিশ্বাসের কোন অর্থ হয় না এবং সেক্ষেত্রে প্রতিজ্ঞাও মূল্যহীন৷ 15 কারণ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলা না হলে তা শুধুই ঈশ্বরের ক্রোধ নিয়ে আসে৷ বিধি-ব্যবস্থা য়েখানে নেই, সেখানে তার লঙঘন নেই৷ 16 তাই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির পূর্ণতা বিশ্বাসের ফলেই লাভ হয়, য়েন তা অনুগ্রহের দান হিসাবে গ্রহণ করা হয়৷ এইভাবে অব্রাহামের সব বংশধরদের জন্য সেই প্রতিজ্ঞা দৃঢ়ভাবে রয়েছে৷ যাদের বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে কেবল তাদের জন্যই সেই প্রতিজ্ঞা রয়েছে, তা নয়, কিন্তু তাদের জন্যেও সেই প্রতিজ্ঞা রয়েছে, যাদের অব্রাহামের মতো বিশ্বাস রয়েছে৷ এই প্রতিশ্রুতি তাদেরই জন্য যাঁরা অব্রাহামের মত বিশ্বাসে চলে৷ অব্রাহাম আমাদের সকলেরই পিতা৷ 17 শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমি তোমাকে বহু জাতির পিতা করলাম৷’ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অব্রাহাম আমাদের পিতা৷ তিনি সেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন, যিনি মৃতকে জীবন দেন ও যার অস্তিত্ব নেই তাকে অস্তিত্বে আনেন৷ 18 অব্রাহামের সন্তান হবার কোন আশা ছিল না; কিন্তু অব্রাহাম ঈশ্বরের ওপরে বিশ্বাসে স্থির ছিলেন৷ আশা না থাকলেও আশা করে যাচ্ছিলেন; আর এই জন্যই তিনি বহুজাতির পিতা হতে পেরেছিলেন৷ ঠিক ঈশ্বর য়েমন বলেছিলেন, ‘তোমার বংশধররা আকাশের তারার মত অসংখ্য হবে৷’ 19 অব্রাহামের বয়স তখন একশ বছর, কাজেই সন্তান লাভের জন্য তাঁর দৈহিক ক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছিল৷ তাঁর স্ত্রী সারার সন্তান ধারণ করার ক্ষমতা ছিল না৷ অব্রাহাম এসব কথা চিন্তা করেছিলেন, কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন নি৷ 20 ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার পূর্ণতার বিষয়ে অব্রাহামের কোন সন্দেহ ছিল না৷ অব্রাহাম অবিশ্বাস করলেন না বরং তিনি বিশ্বাসে বলবান হয়ে উঠলেন এবং ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন৷ 21 ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা য়ে তিনি সফল করতে পারবেন, সেই সম্বন্ধে অব্রাহাম সুনিশ্চিত ছিলেন৷ 22 আর তাই, ‘এই বিশ্বাস তাকে ঈশ্বরের সম্মুখে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছিল৷’ 23 শাস্ত্রে এই কথা শুধু য়ে তাঁর জন্যই লেখা হয়েছিল তা নয়, 24 ঐ কথাগুলি আমাদের জন্যও লেখা হয়েছে৷ আমাদের বিশ্বাসকেও ঈশ্বর আমাদের পক্ষে ধার্মিকতা হিসাবে প্রতিপন্ন করলেন৷ কারণ যিনি প্রভু যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, সেই ঈশ্বরে আমরা বিশ্বাস করি৷ 25 আমাদের পাপের জন্য সেই যীশুকে মৃত্যুর হাতে সমর্পণ করা হল এবং আমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করার জন্য যীশু মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন৷
1 বিশ্বাসের জন্য আমরা ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছি বলে, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের শান্তি চুক্তি হয়েছে৷ 2 খ্রীষ্টের জন্যই আমরা আমাদের বিশ্বাসের দ্বারা ঈশ্বরের অনুগ্রহে প্রবেশ করেছি এবং দাঁড়িয়ে আছি৷ আমরা আনন্দ করি য়ে এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা একদিন ঈশ্বরের মহিমার অংশীদার হব৷ 3 এমন কি সমস্ত দুঃখ কষ্টের মধ্যে আমরা আনন্দ করি, কারণ আমরা জানি য়ে এইসব দুঃখ কষ্ট আমাদের ধৈর্য্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়৷ 4 ধৈর্য্য আমাদের স্বভাবকে খাঁটি করে তোলে এবং এই খাঁটি স্বভাবের ফলে জীবনে আশার উত্পত্তি হয়৷ 5 এই প্রত্যাশা কখনই আমাদের নিরাশ করে না, কারণ পবিত্র আত্মার মাধ্যমে ঈশ্বরের ভালবাসা আমাদের অন্তরে ঢেলে দেওয়া হয়েছে৷ সেই পবিত্র আত্মাকে আমরা ঈশ্বরের দানরূপে পেয়েছি৷ 6 আমরা যখন শক্তিহীন ছিলাম তখন খ্রীষ্ট আমাদের জন্য প্রাণ দিলেন, উপযুক্ত সময়ে খ্রীষ্ট আমাদের মত দুষ্ট লোকদের জন্য প্রাণ দিলেন৷ 7 কোন সত্ লোকের জন্য কেউ নিজের প্রাণ দেয় না বললেই চলে৷ যিনি অন্য়ের উপকার করেছেন এমন লোকের জন্য হয়তো বা কেউ সাহস করে প্রাণ দিলেও দিতে পারে৷ 8 কিন্তু আমরা যখন পাপী ছিলাম খ্রীষ্ট তখনও আমাদের জন্য প্রাণ দিলেন; আর এইভাবে ঈশ্বর দেখালেন য়ে তিনি আমাদের ভালবাসেন৷ 9 ঈশ্বর খ্রীষ্টের রক্তের মাধ্যমে আমাদের ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছেন; তবে এই সত্যটি আরও কত সুনিশ্চিত য়ে খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের ক্রোধ থেকে রক্ষা পাব৷ 10 আমরা যখন তাঁর শত্রু ছিলাম তখন যদি ঈশ্বর তাঁর পুত্রের মৃত্যুর মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে আমাদের মিলন করিয়ে নিলেন, তাহলে মিলনের পরে এটা আরও কত নিশ্চিত য়ে আমরা এখন তাঁর পুত্রের জীবনের মাধ্যমে উদ্ধার পাব৷ 11 শুধু য়ে উদ্ধার পাব তা নয়, এখন আমরা ঈশ্বরে আনন্দ করি৷ আমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে সেই আনন্দ পেয়েছি, য়াঁর মাধ্যমে আমরা এখন ঈশ্বরের মিত্রে পরিণত হয়েছি৷ 12 একজনের মধ্য দিয়ে য়েমন পৃথিবীতে পাপ এসেছিল, তেমনি পাপের সাথে এসেছে মৃত্যু৷ সকল মানুষ পাপ করেছে আর পাপ করার জন্যই সকলের কাছে মৃত্যু এল৷ 13 মোশির বিধি-ব্যবস্থা আসার আগে জগতে পাপ ছিল, অবশ্য তখন বিধি-ব্যবস্থা ছিল না বলে ঈশ্বর লোকদের পাপ গন্য করতেন না; 14 কিন্তু আদমের সময় থেকে মোশির সময় পর্যন্ত মৃত্যু সমানে রাজত্ব করছিল৷ ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করার দরুন আদম পাপ করেছিলেন৷ কিন্তু যাঁরা আদমকে দেওয়া ঐসব আদেশ লঙঘন করে পাপ করে নি, মৃত্যু তাদের ওপরেও রাজত্ব করছিল৷আসলে যিনি আসছিলেন, আদম ছিলেন তাঁর প্রতিরূপ৷ 15 কিন্তু আদমের অপরাধ য়েরকম ঈশ্বরের অনুগ্রহ দান সেই রকমের নয়, কারণ ঐ একটি লোকের পাপের দরুন অনেকের মৃত্যু হল, সেইরকমভাবেই একজন ব্যক্তি যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে বহুলোক ঈশ্বরের অনুগ্রহদানে জীবন লাভ করল৷ 16 আর ঈশ্বরের অনুগ্রহদানের মধ্য দিয়ে যা এল তা আদমের একটি পাপের ফল থেকে ভিন্ন, কারণ একটি পাপের জন্য নেমে এসেছিল বিচার ও পরে দণ্ডাজ্ঞা; কিন্তু বহুলোকের পাপের পর এল ঈশ্বরের বিনামূল্যের দান৷ 17 একজন পাপ করল, আর সেই এক ব্যক্তির অপরাধের জন্য সকলের ওপর মৃত্যু রাজত্ব করল; কিন্তু এখন যাঁরা ঈশ্বরের কাছ থেকে অনুগ্রহ লাভ করে ও ধার্মিক গন্য হবার অধিকার দান হিসেবে পায়, তারা নিশ্চয়ই সেই এক ব্যক্তি অর্থাত্ যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে জীবনের পরিপূর্ণতা নিয়ে রাজত্ব করবে৷ 18 তাই আদমের একটি পাপ য়েমন সকলের উপরে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এল, সেই একইভাবে খ্রীষ্টের একটি ন্যায় কাজের মধ্য দিয়ে তাঁর দ্বারা সকলেই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে আর তার ফলে তারা প্রকৃত জীবনের অধিকারী হয়েছে৷ 19 সুতরাং য়েমন একজনের অবাধ্যতার ফলে সব লোক পাপী বলে গন্য হল, সেইরকমভাবে সেই একজনের বাধ্যতার ফলে অনেকে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবে৷ 20 বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছিল যাতে পাপ বৃদ্ধি পায়৷ কিন্তু য়েখানে পাপের বাহুল্য হল সেখানে ঈশ্বরের অনুগ্রহ আরো উপচে পড়ল৷ 21 এক সময় য়েমন পাপ মৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের ওপর রাজত্ব করেছিল, সেইরকম ঈশ্বর লোকদের ওপর তাঁর মহা অনুগ্রহ দান করলেন যাতে সেই অনুগ্রহ তাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করে তোলে, আর এরই ফলে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা মানুষ অনন্ত জীবন লাভ করে৷
1 তাই তোমরা কি মনে কর য়ে আমরা পাপ করতেই থাকব য়েন ঈশ্বরের অনুগ্রহ বৃদ্ধি পায়? 2 মোটেই না৷ আমাদের পুরানো পাপ জীবনের যখন মৃত্যু হয়েছে তখন আমরা কিভাবে আবার পাপেই জীবন যাপন করতে পারি? 3 তোমরা কি ভুলে গেলে য়ে আমরা বাপ্তাইজ হওয়ার সময় খ্রীষ্ট যীশুর দেহের অংশতে পরিণত হয়েছিলাম? 4 বাপ্তাইজ হওয়াতে আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে তাঁর মৃত্যুতে সমাহিত হয়েছিলাম, যাতে খ্রীষ্ট য়েমন ঈশ্বরের মহাশক্তিতে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, তেমনি আমরাও তাঁর সঙ্গে পুনরুত্থিত হয়ে এক নতুন জীবনের পথে চলতে পারি৷ 5 খ্রীষ্ট মৃত্যুভোগ করলেন আর আমরা তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর সঙ্গে যখন যুক্ত হলাম, সুতরাং খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন বলে, আমরাও তাঁর পুনরুত্থানের অংশীদার হব৷ 6 আমরা জানি য়ে আমাদের পুরানো জীবন খ্রীষ্টের সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে, যাতে আমাদের পুরানো পাপের জীবন ধ্বংস হয়৷ তাহলে আমরা আর পাপের দাস হয়ে থাকব না, 7 কারণ যার মৃত্যু হয়েছে সে পাপের শক্তি থেকেও মুক্তি পেয়েছে৷ 8 যদি আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে মরে থাকি, আমরা জানি য়ে আমরা তাঁর সঙ্গেই জীবিত হব৷ 9 আমরা জানি য়ে খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন, তিনি আর মরতে পারেন না৷ এখন তাঁর ওপর মৃত্যুর কোন কর্ত্তৃত্ব নেই৷ 10 খ্রীষ্ট মৃত্যুভোগ করেছিলেন পাপের শক্তিকে চিরতরে পরাভূত করার জন্যে৷ এখন তাঁর য়ে জীবন, সেই জীবন তিনি ঈশ্বরের জন্য যাপন করেন৷ 11 ঠিক সেইভাবে তোমরাও নিজেদের পাপ সম্বন্ধীয় বিষয়ে মৃত মনে কর এবং নিজেদের দেখ য়ে তোমরা খ্রীষ্ট যীশুতে সংযুক্ত থেকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত আছ৷ 12 তাই তোমাদের ইহজীবনে পাপকে কর্ত্তৃত্ব করতে দিও না৷ যদি দাও তবে তোমাদের দেহের মন্দ অভিলাষের অধীনেই তোমরা চলতে থাকবে৷ 13 তাই তোমাদের দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অধর্মের হাতিয়ার করে পাপের কাছে তুলে দিও না৷ মন্দ কাজে তোমাদের দেহকে ব্যবহার করো না৷ ঈশ্বরের হাতে নিজেদের তুলে দাও৷ সেই লোকদের মতো হও যাঁরা পাপের সম্বন্ধে মরেছিলেন এবং মৃতদের মধ্য হতে পুনরুত্থিত হয়ে এখন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত আছেন৷ নিজেদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ধার্মিকতার হাতিয়ার করে ঈশ্বরের সেবায় নিবেদন কর৷ 14 পাপ আর তোমাদের ওপর প্রভুত্ব করবে না, কারণ তোমাদের জীবন আর বিধি-ব্যবস্থার অধীন নয় কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহের অধীন৷ 15 তাহলে আমরা কি করব? আমরা বিধি-ব্যবস্থার অধীন নই; ঈশ্বরের অনুগ্রহের অধীন,তাই আমরা কি পাপ করতেই থাকব? না৷ 16 তোমরা নিশ্চয় জান য়ে তোমরা যখন কারো অনুগত হবে বলে তারই হাতে নিজেদের দাসরূপে তুলে দাও, তখন যার অনুগত হলে, তোমরা তারই দাস৷ তোমরা পাপের দাস হতে পার বা ঈশ্বরের অনুগত হতে পার৷ পাপ আত্মিক মৃত্যু আনে; কিন্তু ঈশ্বরের অনুগত থাকলে তোমরা ধার্মিক প্রতিপন্ন হবে৷ 17 অতীতে তোমরা পাপের দাস ছিলে, পাপ তোমাদের উপর কর্ত্তৃত্ব করত৷ কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই কারণ তোমাদের কাছে য়ে শিক্ষা সমর্পিত হয়েছিল তা পূর্ণরূপে পালন করছ৷ 18 তোমরা পাপের দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে এখন ধার্মিকতারই দাস হয়েছ৷ 19 তোমাদের বুঝতে কষ্ট হয় বলে এই বিষয়টি দৈনন্দিন জীবনের এই দৃষ্টান্ত দ্বারা বোঝাতে চাইছি৷ তোমরা তোমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাপের দাসত্বে ও মন্দের মধ্যে সঁপে দিয়েছিলে, ফলে তোমরা কেবল মন্দ উদ্দেশ্যেই জীবন যাপন করতে৷ সেইভাবে এখন তোমরা তোমাদের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ধার্মিকতার দাসরূপে সঁপে দাও; তাহলে তোমরা ঈশ্বরে সমর্পিত পবিত্র জীবন যাপন করবে৷ 20 অতীতে তোমরা যখন পাপের দাস ছিলে, তখন ধার্মিকতার সম্বন্ধে স্বাধীন ছিলে৷ 21 সেই মন্দ কাজ থেকে কি ফসল তুলেছ? তার জন্য এখন তোমরা লজ্জা বোধ করছ, কারণ এই সব কাজের ফল মৃত্যু৷ 22 কিন্তু এখন তোমরা সেই পাপ থেকে মুক্ত হয়ে ঈশ্বরের দাস হয়েছ; তাই এখন য়ে ফসল তোমরা পাচ্ছ তা পবিত্রতার জন্য এবং তার পরিণাম অনন্ত জীবন৷ 23 কারণ পাপ য়ে মজুরি দেয়, সেই মজুরি হল মৃত্যু৷ কিন্তু ঈশ্বর অনুগ্রহ করে যা দান করেন সেই দান হল আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুতে অনন্ত জীবন৷
1 ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন মোশির বিধি ব্যবস্থা জান, তখন তোমরা নিশ্চয়ই জান য়ে মানুষ যতদিন বেঁচে থাকে ততদিনই সে বিধি-ব্যবস্থার অধীনে থাকে৷ 2 তোমাদের কাছে একটা দৃষ্টান্ত দিই৷ একজন স্ত্রীলোক নিয়ম মত , যতদিন তার স্বামী বেঁচে থাকে ততদিন তার প্রতি দায়বদ্ধ থাকে৷ স্বামী মারা গেলে সে বিয়ের বিধি-ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পায়৷ 3 কিন্তু সেই স্ত্রীলোক, তার স্বামী বেঁচে থাকতে যদি অপর পুরুষকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে৷ তার স্বামী যদি মারা যায়, তাহলে সে বিয়ের বিধি-ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে যায়; আর তখন সে যদি অন্য পুরুষকে বিয়ে করে তাহলে সে ব্যভিচারের দোষে দোষী হয় না৷ 4 অতএব আমার ভাই ও বোনেরা, খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে সেইভাবেই তোমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে ও তোমরা বিধি-ব্যবস্থার বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছ৷ মৃত্যু থেকে যিনি বেঁচে উঠেছেন এখন তোমরা তাঁরই হয়েছ৷ আমরা খ্রীষ্টের হয়েছি, য়েন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ফল উত্পন্ন করতে পারি৷ 5 অতীতে আমরা মানবিক পাপ প্রকৃতি অনুসারে জীবনযাপন করছিলাম৷ বিধি-ব্যবস্থা পাপের য়েসব প্রবৃত্তি জাগিয়ে তোলে সেগুলি আমাদের দেহে প্রবল ছিল৷ যার ফলে আমরা যা করতাম তা আমাদের কাছে আত্মিক মৃত্যু নিয়ে আসত৷ 6 অতীতে বিধি-ব্যবস্থা আমাদের বন্দী করে রেখেছিল, কিন্তু এখন আমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে এবং আমরা বিধি-ব্যবস্থার বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছি৷ এখন আমরা নুতন ধারায় ঈশ্বরের সেবা করি, পুরানো লিখিত বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ অনুসারে নয় কিন্তু পবিত্র আত্মার নির্দেশে৷ 7 তোমরা হয়তো ভাবছ য়ে আমি বলছি বিধি-ব্যবস্থা এবং পাপ একই বস্তু; না নিশ্চয়ই নয়৷ একমাত্র বিধি-ব্যবস্থার দ্বারাই পাপ কি তা আমি বুঝতে পারলাম৷ আমি কখনই বুঝতে পারতাম না য়ে লোভ করা অন্যায়; যদি বিধি-ব্যবস্থায় লেখা না থাকত, ‘অপরের জিনিসে লোভ করা পাপ৷’ 8 কারণ পাপ ঐ নিষেধাজ্ঞার সুয়োগ নিয়ে আমার অন্তরে তখন লোভের আকর্ষণ জাগিয়ে তুলতে শুরু করল৷ তাই ঐ আদেশের সুয়োগ নিয়ে আমার জীবনে পাপ প্রবেশ করল৷ ব্যবস্থা না থাকলে পাপের কোন শক্তি থাকে না৷ 9 এক সময় আমি বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই বেঁচে ছিলাম; কিন্তু যখন বিধি-ব্যবস্থা এল তখন আমার মধ্যে পাপ বাস করতে শুরু করল৷ 10 তখন আমি আত্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করলাম৷ য়ে আদেশের ফলে জীবন পাবার কথা সেই আদেশ আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল৷ 11 ঈশ্বরের সেই আজ্ঞা দিয়েই পাপ আমাকে ঠকাবার সুয়োগ পেল এবং তাই দিয়েই আমাকে আত্মিকভাবে মেরে ফেলল৷ 12 তাহলে দেখা যাচ্ছে য়ে বিধি-ব্যবস্থা পবিত্র আর তাঁর আজ্ঞাও পবিত্র, ন্যায় ও উত্তম৷ 13 তাহলে যা উত্তম, তাই কি আমার কাছে মৃত্যু নিয়ে এল? নিশ্চয়ই না৷ উত্তম বিষয়ের মধ্য দিয়ে পাপ আমার কাছে মৃত্যু নিয়ে এল৷ যাতে পাপকে পাপ বলে চেনা যায়৷ আজ্ঞাকে ব্যবহার করে পাপকে অতীব পাপপূর্ণ বলে চেনা গেল৷ 14 আমরা জানি য়ে বিধি-ব্যবস্থা আত্মিক; কিন্তু আমি আত্মিক নই৷ ক্রীতদাসের মতো পাপ আমার ওপর কর্ত্তৃত্ব করে৷ 15 কি করছি তাই আমি জানি না কারণ আমি যা করতে চাই তা করি না বরং য়ে মন্দ জিনিস আমি ঘৃণা করি তাই করি৷ 16 আর আমি য়ে সব মন্দ কাজ করতে চাই না যদি তাই করি তাহলে বুঝতে হবে বিধি-ব্যবস্থা য়ে উত্তম তা আমি মেনে নিয়েছি৷ 17 আমি য়েসব মন্দ কাজ করছি তা আমি নিজে য়ে করছি তা নয়, করছে সেই পাপ যা আমার মধ্যে বাসা বেঁধে আছে৷ 18 হ্যাঁ, আমি জানি যা ভাল তা আমার মধ্যে বাস করে না, অর্থাত্ আমার অনাত্মিক মানবিক প্রকৃতির মধ্যে তা নেই৷ কারণ যা ভাল তা করবার ইচ্ছা আমার মধ্যে আছে কিন্তু তা আমি করতে পারি না৷ 19 কারণ যা ভাল আমি করতে চাই তা করি না; কিন্তু য়ে অন্যায় আমি করতে চাই না কাজে তাই তো করি৷ 20 যা আমি করতে চাই না যদি আমি তাই করি তাহলে য়ে পাপ আমার মধ্যে আছে তা এই মন্দ কাজ করায়৷ 21 কাজেই আমার মধ্যে এই নিয়মটি আমি লক্ষ্য করছি য়ে, যখন আমি সত্কার্য় করতে ইচ্ছা করি তখনও মন্দ আমার মধ্যে থাকে৷ 22 আমার অন্তর ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভালবাসে৷ 23 কিন্তু আমি দেখছি য়ে আমার দেহের মধ্যে আর একটা বিধি-ব্যবস্থা কাজ করছে, যা সেই বিধি-ব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করে চলে, যা আমার মন গ্রহণ করেছে৷ আমার দেহে য়ে বিধি-ব্যবস্থা কাজ করছে তা হল পাপের বিধি-ব্যবস্থা এবং এর হাতে আমি বন্দী৷ 24 কি হতভাগ্য মানুষ আমি! কে আমাকে এই মরদেহ থেকে উদ্ধার করবে? 25 ঈশ্বর আমাকে উদ্ধার করবেন! আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পরিত্রাণের দ্বারা ঈশ্বর আমাকে উদ্ধার করবেন৷এইজন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই৷ তাহলে দেখছি য়ে আমি মনে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থার দাস; কিন্তু আমার পাপ প্রকৃতির দিক থেকে আমি পাপ ব্যবস্থারই দাস৷ 26
1 তাই যাঁরা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে তারা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে না৷ 2 কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে আত্মার য়ে বিধি-ব্যবস্থা জীবন আনে, তা আমাকে মুক্ত করেছে সেই পাপের ব্যবস্থা থেকে যা মৃত্যুর কারণ হয়৷ 3 মোশির বিধি-ব্যবস্থা যা পারে নি তা ঈশ্বর সাধন করলেন; কারণ আমাদের স্বভাবজাত দুর্বলতার জন্য মোশির বিধি-ব্যবস্থা শক্তিহীন ছিল৷ তাই তিনি তাঁর নিজের পুত্রকে আমাদের মত মনুষ্যদেহে পাঠালেন, য়েন তিনি মানুষের পাপের জন্য বলি হন৷ ঈশ্বর এইভাবে সেই মানবীয় দেহে পাপকে মণ্ডিত করলেন৷ 4 য়েন দেহের বশে নয় কিন্তু আত্মার বশে চলার দরুন আমাদের মধ্যে বিধি-ব্যবস্থার দাবী দাওয়াগুলি পূর্ণ হয়৷ 5 যাঁরা পাপ প্রবৃত্তির বশে চলে তাদের মন পাপ চিন্তাই করে৷ কিন্তু যাঁরা পবিত্র আত্মার বশে চলে, তারা পবিত্র আত্মা যা চান সেই অনুসারে চিন্তা করে৷ 6 আমাদের চিন্তা যদি দেহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তবে তার ফল হয় মৃত্যু৷ কিন্তু যদি পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত হয় তবে তার ফল হয় জীবন ও শান্তি৷ 7 তাই য়ে মন মানুষের পাপ স্বভাব দ্বারা পরিচালিত সে ঈশ্বর বিরোধী কারণ সে নিজেকে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থার অধীনে রাখে না৷ বাস্তবে সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা পালনে অসমর্থ৷ 8 যাঁরা তাদের দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চালিত হয় তারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না৷ 9 কিন্তু তোমরা তোমাদের দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চালিত নও বরং আত্মা দ্বারা চালিত; অবশ্য যদি ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের অন্তরে বিরাজ করেন তাহলে তুমি আত্মার দ্বারা চালিত হবে; কিন্তু যার মধ্যে খ্রীষ্টের আত্মা নেই সে খ্রীষ্টের নয়৷ 10 পাপের ফলে তোমাদের দেহ মৃত্যুর অধীন, কিন্তু খ্রীষ্ট যদি তোমাদের অন্তরে থাকেন, তবে পবিত্র আত্মা তোমাদের জীবন দান করেন, কারণ খ্রীষ্ট তোমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছেন৷ 11 ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন, আর ঈশ্বরের আত্মা যদি তোমাদের মধ্যে বাস করেন তবে তিনি তোমাদের মরণশীল দেহকে জীবনময় করবেন৷ ঈশ্বরই যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, তাঁর য়ে আত্মা তোমাদের মধ্যে আছে তিনি সেই আত্মার দ্বারা তোমাদের দেহকে সঞ্জীবিত করবেন৷ 12 তাই ভাই ও বোনেরা, আমরা ঋণী কিন্তু সেই ঋণ আমাদের দৈহিক প্রবৃত্তির কাছে নয়, আমরা অবশ্যই আর দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা জীবন পরিচালিত করব না৷ 13 কারণ যদি তোমরা দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চল তবে মরবে৷ কিন্তু পবিত্র আত্মার সাহায্যে যদি দেহের মন্দ কাজগুলি থেকে বিরত থাক তবে জীবন পাবে৷ 14 ঈশ্বরের প্রকৃত সন্তানরা ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়৷ 15 তোমরা য়ে আত্মাকে পেয়েছ তা তো দাসত্বের আত্মা নয় য়ে পুনরায় ভয়ে থাকবে, বরং তোমরা য়ে আত্মাকে পেয়েছ তার দ্বারা পুত্রত্ব পেয়েছ; আর সেই আত্মাতে আমরা ডাকি, ‘আব্বা,’ ‘পিতা৷’ 16 পবিত্র আত্মা নিজেও আমাদের আত্মার সঙ্গে সাক্ষ্য দিয়ে বলছেন য়ে আমরা ঈশ্বরের সন্তান; 17 আর যদি সন্তান হই, তবে আমরা তাঁর উত্তরাধিকারী এবং খ্রীষ্টের সাথে উত্তরাধিকারী৷ যদি অবশ্য খ্রীষ্ট য়েমন দুঃখভোগ করেছিলেন, তেমনি আমরা তাঁর সঙ্গে দুঃখভোগ করি, আর তা করলে আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে মহিমান্বিত হব৷ 18 এখন আমরা দুঃখ ভোগ করছি; কিন্তু আমাদের জন্য য়ে মহিমা প্রকাশিত হবে তার সঙ্গে বর্তমান কালের এই দুঃখভোগ তুলনার য়োগ্যই নয়৷ 19 বিশ্বসৃষ্টি ব্যাকুল প্রতীক্ষায় রয়েছে ঈশ্বর কবে তাঁর পুত্রদের প্রকাশ করবেন৷ সমগ্র বিশ্ব এর জন্য আকুল প্রতীক্ষায় রয়েছে৷ 20 বিশ্ব সৃষ্টিকে তো ব্যর্থতার বন্ধনে বেঁধে রাখা হয়েছে যদিও তা তার নিজের ইচ্ছায় নয় কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছায়, যিনি সৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রেখেছেন৷ 21 তবুও বিশ্বসৃষ্টির এই আশা রয়েছে য়ে সেও একদিন এই অবক্ষয়ের দাসত্ব থেকে মুক্ত হবে আর ঈশ্বরের সন্তানদের মহিমাময় স্বাধীনতার অংশীদার হবে৷ 22 আমরা জানি য়ে এখন পর্যন্ত ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টি ব্যথায় আর্তনাদ করছে য়েমন করে নারী সন্তান প্রসবের ব্যথা ভোগ করে৷ 23 কেবল গোটা বিশ্ব নয়, আমরাও যাঁরা পবিত্র আত্মাকে উদ্ধারের জন্য প্রথম ফলরূপে পেয়েছি, আমাদের দেহের মুক্তিলাভের প্রতীক্ষায় অন্তরে আর্তনাদ করছি৷ 24 আমরা উদ্ধার পেয়েছি তাই আমাদের অন্তরে এই প্রত্যাশা রয়েছে৷ প্রত্যাশার বিষয় প্রত্যক্ষ হলে তা প্রত্যাশা নয়৷ যা পাওয়া হয়ে গেছে তার জন্য কে প্রত্যাশা করে? 25 আমরা যা এখনও পাই নি তারই জন্য প্রত্যাশা করছি, ধৈর্য্যের সঙ্গেই তার জন্য প্রতীক্ষা করছি৷ 26 একইভাবে আমাদের দুর্বলতায় পবিত্র আত্মাও আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন, কারণ আমরা কিসের জন্য প্রার্থনা করব জানি না, তাই স্বয়ং পবিত্র আত্মা আমাদের হয়ে অব্যক্ত আর্তস্বরে আবেদন জানিয়ে থাকেন৷ 27 মানুষের অন্তরে কি আছে ঈশ্বর তা দেখতে পান; আর ঈশ্বর পবিত্র আত্মার বাসনা কি তা জানেন; কারণ পবিত্র আত্মা ভক্তদের হয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে সেই আবেদন করেন৷ 28 আমরা জানি য়ে সব কিছুতে তিনি তাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করেন যাঁরা ঈশ্বরকে ভালবাসে, যাঁরা তাঁর সংকল্প অনুসারে আহুত৷ 29 জগত্ সৃষ্টির পূর্বে ঈশ্বর যাদের জানতেন, তাদের তিনি তাঁর পুত্রের মত করবেন বলে মনস্থ করলেন৷ এইভাবে যীশু হবেন অনেক ভাইদের মধ্যে প্রথমজাত৷ 30 আগে থেকে তিনি যাদের বেছে রেখেছিলেন তাদের আহ্বান করলেন; যাদের তিনি আহ্বান করলেন তাদের ধার্মিক গন্য করলেন এবং যাদের তিনি ধার্মিক গন্য করলেন তাদের মহিমান্বিত করলেন৷ 31 এই সব দেখে আমরা কি বলব? ঈশ্বর যখন আমাদেরই পক্ষে তখন আমাদের বিপক্ষে কে যাবে? 32 যিনি তাঁর নিজ পুত্রকেই নিষ্কৃতি দেন নি, এমন কি আমাদের সকলের জন্যে তাঁকে মৃত্যুর হাতে সঁপে দিলেন, তখন তিনি তাঁর পুত্রদানের সঙ্গে সবকিছুই কি আমাদের দান করবেন না? 33 ঈশ্বর নিজের বলে যাদের মনোনীত করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কে আনবে? ঈশ্বরই তাদের ধার্মিক করেছেন৷ 34 খ্রীষ্ট যীশু যিনি মারা গেলেন ও মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন, তিনি ঈশ্বরের ডানদিকে বসে আছেন আর আমাদের জন্যে ঈশ্বরের কাছে মিনতি করছেন৷ 35 খ্রীষ্টের ভালবাসা থেকে কোন কিছুই কি আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারে? দুঃখ, দুর্দশা, ক্লেশ, সঙ্কট, তাড়না, দুর্ভিক্ষ, নগ্নতা বা প্রাণসংশয় কি তরবারির মৃত্যু? 36 য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে:‘তোমার জন্য আমরা সমস্ত দিন মৃত্যুবরণ করছি৷ লোকচক্ষে আমরা বলির মেষের মতো৷’ গীতসংহিতা 44:22 37 কিন্তু ঈশ্বর, যিনি আমাদের ভালবাসেন তাঁর দ্বারা আমরা ঐ সবকিছুতে পূর্ণ বিজয়লাভ করি৷ 38 কারণ আমি নিশ্চিতভাবে জানি য়ে কোন কিছুই প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নিহিত ঐশ্বরিক ভালবাসা থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না, মৃত্যু বা জীবন, কোন স্বর্গদূত বা প্রভুত্বকারী আত্মা, বর্তমান বা ভবিষ্যতের কোন কিছু, উর্দ্ধের বা নিম্নের কোন প্রভাব কিংবা সৃষ্ট কোন কিছুই আমাদের সেই ভালবাসা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না৷ 39
1 আমি খ্রীষ্টেতে আছি এবং সত্যি বলছি৷ পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত আমার বিবেকও বলছে য়ে আমি মিথ্যা বলছি না৷ 2 আমি ইহুদী সমাজের জন্য অন্তরে সবসময় গভীর দুঃখ ও বেদনা অনুভব করছি৷ 3 তারা আমার ভাই ও বোন, আমার স্বজাতি৷ তাদের যদি সাহায্য করতে পারতাম! এমন কি আমার এমন ইচ্ছাও জাগে য়ে তাদের বদলে আমি য়েন অভিশপ্ত এবং খ্রীষ্ট থেকে বিচ্ছিন্ন হই৷ 4 তারা ইস্রায়েল বংশেরই মানুষ৷ ঈশ্বর তাদের পুত্র হবার অধিকার দিয়েছেন, নিজের মহিমা দেখিয়েছেন, ধর্ম নিয়ম দিয়েছেন৷ ঈশ্বর তাদেরই মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা, সঠিক উপাসনা পদ্ধতি এবং তাঁর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ 5 ঐ লোকেরাই আমাদের মহান পিতৃপুরুষদের বংশধর এবং খ্রীষ্ট এই জাতির মধ্য দিয়েই পার্থিব জগতে এসেছিলেন৷ ঈশ্বর, যিনি সবার ওপর কর্ত্তৃত্ব করেন, যুগে যুগে তিনি প্রশংসিত হোন্! আমেন! 6 আমি একথা বলছি না য়ে ঈশ্বরের য়ে প্রতিশ্রুতি তাদের জন্য ছিল তা তিনি পূর্ণ করেন নি৷ কিন্তু ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষই সত্যিকার ইস্রায়েলের লোক নয়৷ 7 এমনও নয় য়ে অব্রাহামের বংশের বলেই তারা সত্যিকারের সন্তান; কিন্তু ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘কেবল ইসহাক্ই তোমার বৈধ পুত্র হবে৷’ 8 এর অর্থ হোল এই য়ে দৈহিকভাবে জন্মপ্রাপ্ত অব্রাহামের সন্তানরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান নয়৷ অব্রাহামের প্রকৃত বংশধর তারাই যাঁরা অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি অনুসারে জন্মলাভ করেছে৷ 9 তিনি অব্রাহামকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন: ‘নিরুপিত সময়ে আমি পুনর্বার আসব তখন সারার এক পুত্র হবে৷’ 10 শুধু তাই নয়, রিবিকাও একজন মানুষের কাছ থেকেই সন্তান পেয়েছিলেন, তিনি আমাদের পূর্বপুরুষ ইসহাক৷ 11 সেই সন্তান দুটির জন্ম হবার পূর্বে ঈশ্বর রিবিকাকে বলেছিলেন: ‘তোমার সন্তানদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কনিষ্ঠের দাস হবে৷’তাদের জন্মের পূর্বেই ঈশ্বর এই কথা জানিয়েছিলেন কারণ ঈশ্বরের সংকল্প অনুসারে তারা মনোনীত হয়েছিল৷ সেই সন্তান মনোনীত হল তার কৃত কোন কর্মের জন্য নয় বরং এই জন্যে য়ে ঈশ্বর তাকেই আব্বান করেছিলেন৷ 12 13 আর শাস্ত্রে য়েমন বলে: ‘আমি যাকোবকে ভালোবেসেছি, কিন্তু এষৌকে ঘৃণা করেছি৷’ 14 তাহলে আমরা কি বলব? ঈশ্বরে কি অন্যায় আছে? আমরা তা বলতে পারি না৷ 15 ঈশ্বর, মোশিকে বলেছিলেন, ‘আমি যাকে দয়া করতে চাই, তাকেই দয়া করব৷ যাকে করুণা করতে চাই, তাকেই করুণা করব৷’ 16 তাই ঈশ্বর তাকেই মনোনীত করেন যাকে করুণা করবেন বলে ঠিক করেছেন৷ তাই মানুষের চেষ্টা বা তার ইচ্ছার ওপর তাঁর মনোনয়ন নির্ভর করে না৷ 17 শাস্ত্রে আছে ঈশ্বর ফরৌণকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘তুমি আমার জন্য এই কাজ করবে, এই জন্যই আমি তোমাকে রাজা করেছি, য়েন তোমার মধ্য দিয়ে আমি আমার ক্ষমতা প্রকাশ করতে পারি ও সারা জগতে আমার নাম ঘোষিত হয়৷’ 18 সেজন্য ঈশ্বর যাকে দয়া করতে চান, তাকেই দয়া করেন আর যার অন্তর ঈশ্বর কঠোর করতে চান, তার অন্তর কঠোর করে তোলেন৷ 19 তাহলে তোমরা হয়তো আমাকে বলতে পার: ‘তবে ঈশ্বর কেন পাপের জন্য মানুষদের দোষী করেন? কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা কে প্রতিরোধ করতে পারে? 20 তা সত্য, কিন্তু তুমি কে? ঈশ্বরকে প্রশ্ন করার কোন অধিকার তোমার নেই৷ মাটির পাত্র কি নির্মাণকর্তাকে প্রশ্ন করতে পারে? মাটির পাত্র কখনও নির্মাতাকে বলে না, ‘তুমি কেন আমাকে এমন করে গড়লে?’ 21 কাদামাটির ওপরে কুমোরের কি কোন অধিকার নেই, সে কি একই মাটির তাল থেকে তার ইচ্ছামত দুরকম পাত্র তৈরী করতে পারে না? একটি বিশেষ ব্যবহারের জন্য আর অন্যটি সাধারণ ব্যবহারের জন্য? 22 ঈশ্বর যদিও চেয়েছিলেন, য়ে লোকেদের বিনাশের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তাদের ওপর তিনি তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন ও তাঁর ক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ দেবেন, তবু ঈশ্বর তাঁর ক্রোধের পাত্রদের প্রতি অসীম ধৈর্য্য দেখিয়েছেন৷ 23 যাতে সেই দয়ার পাত্রদের, যাদের তিনি মহিমা প্রাপ্তির য়োগ্য করে তৈরী করেছিলেন, তাদের কাছে তাঁর মহিমার ঐশ্বর্য সম্বন্ধে পরিচয় করাতে পারেন৷ 24 আমরাই সেই লোক, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন৷ ইহুদী বা অইহুদীর মধ্য থেকে ঈশ্বর আমাদের আহ্বান করেছেন৷ 25 এবিষয়ে হোশেয়ের পুস্তকে লেখা আছে:‘যাঁরা আমার লোক নয়, তাদের আমি নিজের লোক বলব, য়ে প্রিয়তমা ছিল না তাকে আমার প্রিয়তমা বলব৷’ হোশেয় 2:23 26 ‘আর য়েখানে ঈশ্বর বলেছিলেন তোমরা আমার লোক নও, সেখানেই তাদের বলা যাবে জীবন্ত ঈশ্বরের সন্তান৷’ হোশেয় 1:10 27 যিশাইয় ইস্রায়েল সম্বন্ধে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন: ‘যদি ইস্রায়েলীদের সংখ্যা সমুদ্র তীরের বালুকণার মত অগনিত হয়, তবুও তাদের মধ্য থেকে অবশিষ্ট কিছু মানুষ শেষ পর্যন্ত উদ্ধার পাবে৷ 28 বিচারের ব্যাপারে প্রভু এই পৃথিবীতে যা করবেন বলেছেন, তিনি তা পূর্ণ করবেন, শিগ্গিরই তা শেষ করবেন৷’ 29 এই রকম কথা যিশাইয় আগেই বলেছিলেন: ‘সর্বশক্তিমান প্রভু যদি আমাদের জন্য কিছু বংশধর রেখে না দিতেন তবে এতদিনে আমরা সদোমের তুল্য হতাম, আমরা এতদিনে ঘমোরার তুল্য হতাম৷’ 30 তাহলে এসবের অর্থ কি? অর্থ এই, যাঁরা অইহুদী তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার কোন চেষ্টা করে নি; তাদেরই ঈশ্বর ধার্মিক প্রতিপন্ন করলেন৷ তাদের বিশ্বাসের জন্য তারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হল৷ 31 আর ইস্রায়েলীরা বিধি-ব্যবস্থা পালন করার মধ্য দিয়ে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেও কৃতকার্য় হয় নি৷ 32 কারণ তারা তাদের কৃতকার্য়ের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেছে৷ ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার জন্য তারা ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে নি, তারা ব্যাঘাতজনক পাথরে ধাক্কা পেয়ে হোঁচট খেয়েছে৷ 33 শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে:‘দেখ, আমি সিযোনে একটি পাথর রাখছি যাতে মানুষ হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে; কিন্তু যাঁরা তাঁর ওপর বিশ্বাস করবে তারা কখনও লজ্জায় পড়বে না৷’যিশাইয় 8:14; 28:16
1 ভাই ও বোনেরা, আমার হৃদয়ের একান্ত কামনা এই, য়েন সমস্ত ইহুদী উদ্ধার পায়৷ ঈশ্বরের কাছে এই আমার কাতর মিনতি৷ 2 আমি ইহুদীদের বিষয়ে একথা বলতে পারি য়ে ঈশ্বরের বিষয়ে তাদের উত্সাহ আছে; কিন্তু এটা তাদের জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে নেই৷ 3 য়ে পথে ঈশ্বর মানুষকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন তারা সেই পথ জানে না৷ তারা নিজেদের প্রচেষ্টায় ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে চায়৷ তাই য়ে পথে ঈশ্বর মানুষকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন, তা তারা গ্রহণ করে নি৷ 4 খ্রীষ্টের আগমনে বিধি-ব্যবস্থার যুগ শেষ হয়েছে৷ এখন যাঁরা তাঁকে বিশ্বাস করে তারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ 5 বিধি-ব্যবস্থা পালন করে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া সম্পর্কে মোশি বলে গেছেন, ‘য়ে ব্যক্তি এইসব বিধি-ব্যবস্থা পালন করবে সে তার মধ্য দিয়েই জীবন পাবে৷’ 6 য়ে ধার্মিকতা ঈশ্বরে বিশ্বাস থেকে জন্মায় সে সম্বন্ধে শাস্ত্রে বলেছে: ‘মনে মনে কখনও বলো না, ‘ওপরে স্বর্গে কে যাবে?’’ এর অর্থ, ‘খ্রীষ্টকে কে পৃথিবীতে নামিয়ে আনবে?’ 7 বা নীচে পাতালে কে যাবে?’’ এর অর্থ, মৃতদের মধ্য থেকে কে খ্রীষ্টকে উর্দ্ধে আনবে?’ 8 এ ব্যাপারে শাস্ত্র বলছে: ‘সেই শিক্ষা তোমার কাছেই তোমার মুখে ও হৃদয়ে আছে৷’সে শিক্ষা হল বিশ্বাসের শিক্ষা যা আমরা লোকদের কাছে বলি৷ 9 তুমি যদি নিজ মুখে যীশুকে প্রভু বলে স্বীকার কর, এবং অন্তরে বিশ্বাস কর য়ে ঈশ্বরই তাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন তাহলে উদ্ধার পাবে৷ 10 কারণ মানুষ অন্তরে বিশ্বাস করে ধার্মিকতা লাভ করার জন্য আর মুখে বিশ্বাসের কথা স্বীকার করে উদ্ধার পাবার জন্য৷ 11 শাস্ত্র এই কথাই বলে যে: ‘য়ে খ্রীষ্টে বিশ্বাস করে সে কখনও লজ্জায় পড়বে না৷’ 12 এক্ষেত্রে ইহুদী ও অইহুদীদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, একই প্রভু সকলের প্রভু৷ যত লোক তাঁকে ডাকে সেই সকলের ওপর তিনি প্রচুর আশীর্বাদ ঢেলে দেন৷ 13 হ্যাঁ, শাস্ত্র বলে, ‘য়ে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে ডাকবে সে উদ্ধার পাবে৷’ 14 কিন্তু য়াঁকে তারা বিশ্বাস করে না তাঁকে ডাকবে কি কবে? আর যাঁরা তাঁর কথা শোনেনি তাঁকে বিশ্বাসই বা কি করে করবে? কেউ প্রচার না করলে তারা শুনবেই বা কি করে? 15 যাঁরা প্রচার করতে যাবে তারা প্রেরিত না হলে কি করে প্রচার করবে? হ্যাঁ, শাস্ত্রে কিন্তু লেখা আছে: ‘সুসমাচার নিয়ে যাঁরা আসেন তাদের চরণযুগল কি সুন্দর৷’ 16 কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে সকলেই সেই সুসমাচার গ্রহণ করেনি৷ যিশাইয় ঠিকই বলেছেন, ‘প্রভু আমরা যা বলেছি তা ক’জনেই বিশ্বাস করেছে৷’ 17 সুতরাং সুসমাচার শোনার ভেতর দিয়েই বিশ্বাস উত্পন্ন হয় আর কেউ খ্রীষ্টের সুসমাচার শোনালে তখনই লোকেরা সুসমাচার শুনতে পায়৷ 18 তাহলে আমিই জিজ্ঞাসা করি, ‘লোকেরা কি তাঁর সুসমাচার শুনতে পায় নি?’ হ্যাঁ, তারা নিশ্চয়ই শুনেছে এবিষয়ে শাস্ত্র বলছে:‘তাঁদের রব পৃথিবীর কোণে কোণে পৌঁচেছে, তাঁদের বাক্য পৃথিবীর সর্বত্র পৌঁছে গেছে৷’গীতসংহিতা 19:4 19 আবার আমি বলি, ‘ইস্রায়েলীয়রা কি বুঝতে পারে নি?’ হ্যাঁ, তারা বুঝতে পেরেছিল৷ ঈশ্বরের হয়ে প্রথমে মোশি এই কথা বলেছেন:‘যাঁরা জাতি বলেই গন্য নয়, এমন লোকদের মাধ্যমে আমি তোমাদের ঈর্ষান্বিত করব৷ অজ্ঞ জাতির দ্বারা তোমাদের ক্রুদ্ধ করব৷’দ্বিতীয় বিবরণ 32:21 20 এরপর ঈশ্বরের মুখপাত্র হয়ে যিশাইয় যথেষ্ট সাহসের সঙ্গে বললেন:‘যাঁরা আমায় খোঁজে নি তারাই কিন্তু আমাকে পেয়েছে; আর যাঁরা আমাকে চায় নি তাদের কাছেই আমি নিজেকে প্রকাশ করেছি৷’যিশাইয় 65:1 21 কিন্তু ইহুদীদের সম্বন্ধে ঈশ্বর বলেন, ‘সমস্ত দিন ধরে দুহাত বাড়িয়ে আমি তাদের জন্য অপেক্ষা করছি৷ কিন্তু তারা আমার অবাধ্য এবং তারা আমার বিরোধিতা করেই চলেছে৷’
1 তাহলে আমি জিজ্ঞাসা করি, ‘ঈশ্বর কি তাঁর লোকদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন?’ নিশ্চয়ই না, কারণ আমিও অব্রাহামের বংশধর, বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন ইস্রায়েলী৷ 2 পূর্বেই ঈশ্বর যাদের তাঁর নিজের লোক বলে মনোনীত করেছিলেন তাদের তিনি দূরে সরিয়ে দেন নি৷ শাস্ত্রে এলিয় সম্বন্ধে কি বলে তোমরা কি জান না? এলিয় যখন ইস্রায়েলীদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন, 3 তখন তিনি বললেন, ‘প্রভু তারা তোমার ভাববাদীদের হত্যা করেছে, তোমার সমস্ত যজ্ঞবেদী ধ্বংস করেছে৷ আমিই একমাত্র ভাববাদী এখনও জীবিত আছি আর লোকরা আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করছে৷’ 4 কিন্তু ঈশ্বর তখন এলিয়কে কি উত্তর দিয়েছিলেন? ঈশ্বর বললেন, ‘এখনও আমার সাত হাজার লোককে বাঁচিয়ে রেখেছি, যাঁরা আমার উপাসনা করে৷ এই সাত হাজার লোক বালের সামনে জানুপাত করে নি৷’ 5 ঠিক সেই ভাবেই এখনও কিছু লোক আছে, ঈশ্বর যাদেরকে নিজ অনুগ্রহে মনোনীত করেছেন৷ 6 ঈশ্বর যদি তাঁর লোকদের অনুগ্রহে মনোনীত করেছেন, তবে তাদের কৃতকর্মের ফলে তারা ঈশ্বরের লোক বলে গন্য হয় নি, কারণ তাই যদি হত তবে ঈশ্বরের অনুগ্রহ আর অনুগ্রহ হত না৷ 7 তবে ব্যাপারটি দাঁড়াল এই: ইস্রায়েলীয়রা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে চাইলেও সফলকাম হয় নি৷ কিন্তু ঈশ্বর যাদের মনোনীত করলেন, তারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হল৷ বাকি ইস্রায়েলীয়রা তাদের অন্তঃকরণ কঠোর করে তুলল ও ঈশ্বরের কথা অমান্য করল৷ 8 শাস্ত্রে তাই লেখা আছে: ‘ঈশ্বর তাদের এক জড়তার আত্মা দিয়েছেন৷’যিশাইয় 29:10‘ঈশ্বর তাদের চক্ষু রুদ্ধ করেছেন, তাই তারা চোখে সত্য দেখতে পায় না৷ ঈশ্বর তাদের কান বন্ধ করে দিয়েছেন, তাই তারা কানে সত্য শুনতে পায় না, এ কথা আজও সত্যি৷’দ্বিতীয় বিবরণ 29:4 9 দাযূদ এ সম্বন্ধে বলেছেন:‘তাদের ভোজ হোক ফাঁদের মতো, জালের মতো যা তাদের ধরে৷ তাদের পতন হোক্ ও তারা দণ্ড ভোগ করুক্৷ 10 তাদের চোখ রুদ্ধ হয়ে যাক্ যাতে তারা দেখতে না পায় আর তারা কষ্টের ভারে সর্বদা নুয়ে থাকুক৷’গীতসংহিতা 69:22-23 11 আমি বলি ইহুদীরা হোঁচট খেয়েছিল৷ সেই হোঁচট খেয়ে তারা কি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল? না৷ বরং তাদের ভুলের জন্যই অইহুদীরা পরিত্রাণ পেয়েছে৷ এটা ইহুদীদের ঈর্ষাতুর করে তোলার জন্য ঘটেছিল৷ 12 ইহুদীদের সেই ভুল, জগতের জন্য মহা আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে৷ ইহুদীরা যা হারাল তাদের সেই ক্ষতি অইহুদীদের সমৃদ্ধ করল৷ তবে একথা নিশ্চিত য়ে পর্য়াপ্ত সংখ্য়ক ইহুদীরা যদি ঈশ্বরের দিকে মন দেয় তবে জগত কত না আশীর্বাদ পূর্ণ হবে৷ 13 এখন আমি অইহুদীদের বলছি, আমি অইহুদীদের জন্য একজন প্রেরিত, আর আমি এই কাজ সাধ্যমত করব৷ 14 আমি আশা রাখি য়ে আমার স্বজাতীয় ইহুদীদের এতে অন্তর্জ্বালা হবে আর হয়তো সেইভাবে কিছু লোককে আমি সাহায্য করতে পারব, য়েন তারা উদ্ধার পায়৷ 15 ঈশ্বর ইহুদীদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে জগতের অন্য লোকদের মিত্র করে নিলেন৷ তাই ঈশ্বর ইহুদীদেরআবার যখন গ্রহণ করবেন তার ফল কি হতে পারে? সে কি মৃতের জীবন পাওয়ার মত অবস্থা হবে না? 16 ময়দার তালের থেকে তৈরী প্রথম রুটি যদি ঈশ্বরকে নিবেদিত করা হয় তাহলে পুরো তালটাই পবিত্র; আর একটি গাছের শিকড় পবিত্র হলে তার সব শাখাই পবিত্র হবে৷ 17 সেই জলপাই গাছের কয়েকটি শাখা ভেঙ্গে গেলে সেই জায়গায় তোমার মত বুনো জলপাইয়ের এক শাখা, ঐ গাছে কলম করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে৷ এখন তুমি আসল জলপাই গাছের বাকী শাখা প্রশাখার সঙ্গে শেকড়ের রস ও জীবনী শক্তি টেনে নিচ্ছ৷ 18 সুতরাং,তুমি সেই ভাঙ্গা শাখাগুলির চেয়ে নিজেকে উন্নত ভেবে গর্ব করো না; কিন্তু যদি কর তাহলে মনে রেখো য়ে শেকড়কে তুমি ধারণ করছ না বরং শেকড়ই তোমাকে ধারণ করে আছে৷ 19 তাহলে তুমি বলতেই পার য়ে তোমাকে কলম লাগাবার জন্যেই শাখাগুলো ভাঙা হয়েছিল৷ 20 হ্যাঁ, ঠিক৷ ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল না বলেই তাদের ভাঙ্গা হয়েছিল, আর তোমার বিশ্বাস ছিল বলেই তুমি সেই গাছের অংশরূপে আছ, এর জন্য গর্ব না করে বরং ভয় কর৷ 21 ঈশ্বর যখন সেই প্রকৃত শাখাগুলিই কেটে ফেলেছিলেন তখন বিশ্বাস না থাকলে তিনি তোমাকেও রেহাই দেবেন না৷ 22 তাহলে ঈশ্বরের দয়ার ভাব ও কঠোরভাব দেখ৷ যাঁরা আর ঈশ্বরের অনুগামী হয় না তাদের তিনি দণ্ড দেন৷ কিন্তু ঈশ্বর তোমার প্রতি দয়াবান হন যদি তুমি তাঁর দয়ায় অবস্থান করতে থাক৷ যদি না থাক তাহলে তোমাকে সেই প্রকৃত গাছ থেকে কেটে ফেলা হবে; 23 আর ইহুদীরা যদি ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসে, তাঁকে বিশ্বাস করে তবে ঈশ্বর ইহুদীদের আবার গ্রহণ করবেন৷ তারা য়েখানে ছিল ঈশ্বর তাদের সেখানে আবার জুড়ে দেবেন৷ 24 বুনো জলপাই গাছের শাখা স্বাভাবিকভাবে উত্তম জলপাই গাছে লাগানো হয় না; কিন্তু তোমরা অইহুদীরা বুনো জলপাই গাছের শাখার মত হলেও তোমাদের সকলকে উত্তম জলপাই গাছের সঙ্গে যুক্ত করা হল৷ সুতরাং ইহুদীরা উত্তম জলপাই গাছের শাখা-প্রশাখা বলে তাদের ভেঙ্গে ফেলা হলেও তাদের নিজস্ব উত্তম গাছের সঙ্গে আবার কত সহজেই না যুক্ত করা যাবে৷ 25 ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা নিগূঢ় সত্য বোঝ যাতে নিজের চোখে নিজেকে জ্ঞানী না মনে কর৷ এই হল সত্য য়ে ইস্রায়েলীয়দের কিছু অংশ শক্তগ্রীব হয়েছে৷ অইহুদীদের সংখ্যা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ইহুদীদের সেই মনোভাব বদলাবে না৷ 26 এইভাবে সমগ্র ইস্রায়েলের উদ্ধার হবে৷ শাস্ত্রে লেখা আছে:‘সিযোন থেকে ত্রাণকর্তা আসবেন৷ তিনি যাকোবের বংশ থেকে সব অধর্ম দূর করবেন৷ 27 আর তখন এই লোকদের সব পাপ হরণ করে আমি তাদের সঙ্গে আমার চুক্তি স্থাপন করব৷’যিশাইয় 59:20-21; 27:9 28 সুসমাচার গ্রহণ করতে অস্বীকার করে ইহুদীরা ঈশ্বরের শত্রু হয়েছে৷ তোমরা যাঁরা অইহুদী তোমাদের সাহায্য করতেই এমন হয়েছে; কিন্তু বেছে নেবার দিক থেকে ইহুদীরা এখনও ঈশ্বরের মনোনীত লোক৷ তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই সুবাদে তিনি তাদের ভালবাসেন৷ 29 ঈশ্বর কাউকে আহ্বান জানিয়ে ও দান করে অনুশোচনা করেন না৷ 30 একসময় তোমরা ঈশ্বরের অবাধ্য ছিলে, কিন্তু এখন ইহুদীদের অবাধ্যতার জন্য তোমরা তাঁর করুণা পেয়েছ৷ 31 ঠিক তেমনই তোমরা করুণা পেয়েছ বলে ইহুদীরা ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছে য়েন ইহুদীরা ঈশ্বরের করুণা পেতে পারে৷ 32 ঈশ্বর তাদের সকলকেই অবাধ্যতায় বন্দী করে রেখেছেন যাতে তিনি সকলের প্রতি দয়া করতে পারেন৷ 33 হ্যাঁ, ঈশ্বর তাঁর করুণায় কতো ধনবান, তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা কতো গভীর৷ তার বিচারের ব্যাখ্যা কেউ করতে পারে না৷ তাঁর পথ কেউ বুঝতে পারে না৷ 34 শাস্ত্রে য়েমন বলে,‘প্রভুর মন কে জেনেছে? কেই বা তাঁর মন্ত্রণাদাতা হয়েছে?’যিশাইয় 40:13 35 ‘আর কে-ই বা প্রথমে ঈশ্বরকে কিছু দান করেছে? এমন কে আছে যার কাছে ঈশ্বর ঋণী?’ইযোব 41:11 36 কারণ ঈশ্বরই সবকিছু নির্মাণ করেছেন; সবকিছু তাঁর মধ্য দিয়েই অস্তিত্বে আছে এবং তাঁর জন্যেই রয়েছে৷ চিরকাল ঈশ্বরের মহিমা অটুট থাকুক! আমেন৷
1 ভাই ও বোনেরা আমার মিনতি এই, ঈশ্বর আমাদের প্রতি দয়া করেছেন বলে তোমাদের জীবন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত বলিরূপে উত্সর্গ কর, তা তাঁর কাছে পবিত্র প্রীতিজনক হোক৷ ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য তোমাদের কাছে এ এক আত্মিক উপায়৷ 2 এই জগতের লোকদের মতো নিজেদের চলতে দিও না, বরং নতুন চিন্তাধারায় নিজেদের পরিবর্তন কর; য়েন বুঝতে পার ঈশ্বর কি চান, কোনটা ভাল,কোনটা তাঁকে খুশী করে ও কোনটা সিদ্ধ৷ 3 ঈশ্বর আমাকে একটি বিশেষ বর দান করেছেন, তাই তোমাদের মধ্যে প্রত্যেককে আমার কিছু বলার আছে৷ নিজের সম্বন্ধে য়েমন ধারণা থাকা উচিত তার থেকে উঁচু ধারণা পোষণ কোরো না; কিন্তু ঈশ্বর যাকে য়ে পরিমাণ বিশ্বাস দিয়েছেন তোমরা সেইমতো নিজেদের সম্বন্ধে ধারণা পোষণ কর৷ 4 আমাদের সকলের দেহ আছে আর সেই দেহে অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আছে, এই অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি একই কাজ করে না৷ 5 ঠিক তেমনই আমরা অনেকে মিলে খ্রীষ্টেতে দেহ গঠন করি৷ আমরা সেই দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত৷ 6 আর ঈশ্বরের অনুগ্রহ অনুসারেই আমরা ভিন্ন ভিন্ন বরদান পেয়েছি৷ কেউ যদি ভাববাণী বলার বরদান পেয়ে থাকে তবে সে তার বিশ্বাসের পরিমাণ অনুসারে ভাববাণী বলুক৷ 7 যার সেবা করবার বরদান আছে সে তা সেবা কর্মেই প্রযোগ করুক৷ য়ে শিক্ষক, সে শিক্ষার দ্বারা লোকদের উত্সাহ দিক৷ 8 য়ে উপদেষ্টা, সে উপদেশ দানের কাজ করুক৷ যার অপরকে সাহায্যদানের ক্ষমতা আছে, সে উদারভাবেই সাহায্য করুক৷ কর্ত্তৃত্ব যার হাতে সে সযত্নেই কর্ত্তৃত্ব করুক৷ য়ে দযা করে, সে আনন্দের সঙ্গেই তা করুক৷ 9 তোমার ভালবাসা অকৃত্রিম হোক্৷ যা মন্দ তা ঘৃণা কর আর যা ভাল তাতে আসক্ত থাক৷ 10 ভাই বোনের মধ্যে য়ে পবিত্র ভালোবাসা থাকে সেই ভালোবাসায় তোমরা পরস্পরকে ভালবাস৷ অপর ভাই বোনেদের নিজের থেকেও বেশী সম্মানের য়োগ্য বলে মনে কর৷ 11 প্রভুর কাজে শিথিল হযো না৷ আত্মায় উদ্দীপ্ত হয়েই তোমরা প্রভুর সেবা কর৷ 12 আনন্দ কর, কারণ তোমাদের প্রত্যাশা আছে৷ তোমরা দুঃখকষ্টে সহিষ্ণু হও; নিরন্তর প্রার্থনা কর৷ 13 তোমাদের যা আছে তা অভাবী ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে ভাগ করে নাও৷ তোমাদের গৃহে অতিথিদের স্বাগত জানাও৷ 14 তোমাদের যাঁরা নির্য়াতন করে তাদের জন্য প্রার্থনা করো, য়েন ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করেন৷ তাদের মঙ্গল কামনা কর, অভিশাপ দিও না৷ 15 তোমরা অপরের সুখে সুখী হও, যাঁরা দুঃখে কাঁদছে তাদের সঙ্গে কাঁদো৷ 16 তোমরা পরস্পর একপ্রাণ হয়ে শান্তিতে থাক, অহঙ্কারী হযো না৷ যাঁরা দীনহীন মানুষ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চল৷ নিজেকে জ্ঞানী মনে করে গর্ব করো না৷ 17 কেউ অপরাধ করলে অপকার করে প্রতিশোধ নিও না৷ সকলের চোখে যা ভাল তোমরা তা করতেই চেষ্টা কর৷ 18 যতদূর পার সকলের সঙ্গে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করে যাও৷ 19 আমার বন্ধুরা, কেউ তোমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করলে তাকে শাস্তি দিতে য়েও না, বরং ঈশ্বরকেই শাস্তি দিতে দাও৷ শাস্ত্রে প্রভু বলছেন, ‘প্রতিশোধ নেওয়া আমার কাজ, প্রতিদান যা দেবার আমিই দেব৷’ 20 কিন্তু তোমরা এই কাজ কর, ‘তোমাদের শত্রুরা ক্ষুধার্ত হলে তাকে খেতে দাও, তোমাদের শত্রু তৃষ্ণার্ত হলে তাকে জল পান করাও৷ এই রকম করলে তোমরা তাকে লজ্জায় ফেলে দেবে৷’আর তা হবে তার মাথায় একরাশি জ্বলন্ত কয়লা রাখার মতো৷ 21 মন্দের কাছে পরাস্ত হযো না, বরং উত্তমের দ্বারা মন্দকে পরাস্ত করো৷
1 প্রত্যেক মানুষের উচিত দেশের শাসকদের অনুগত থাকা, কারণ দেশ শাসনের জন্য ঈশ্বরই তাদের ক্ষমতা দিয়েছেন৷ যাঁরা এমন শাসন কার্য় নিযুক্ত, ঈশ্বরই তাদের সেই কাজের ক্ষমতা দিয়েছেন৷ 2 তাই তো কর্ত্তৃপক্ষের বিরোধিতা য়ে করে, সে ঈশ্বর যা স্থির করেছেন তারই বিরোধিতা করে৷ তেমন বিরোধিতা যাঁরা করে তারা নিজেরাই নিজেদের শাস্তি ডেকে আনবে৷ 3 তোমরা ভাল কাজ করো, শাসকবৃন্দ তোমাদের প্রশংসা করবে৷ ভয় পাবার কারণ থাকে তাদেরই যাঁরা মন্দ কাজ করে; যদি তোমরা কর্ত্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভয় পেতে না চাও, তবে যা ভাল তাই কর৷ 4 শাসনকর্তারা আসলে তোমাদের ভালোর জন্য ঈশ্বর নিযোজিত দাস; কিন্তু তোমরা যদি অন্যায় কর তাহলে ভীত হবার কারণ নিশ্চয় থাকে৷ শাস্তি দেবার মতো ক্ষমতা শাসকের ওপর ন্যস্ত আছে, তিনি তো ঈশ্বরের দাস; তাই যাঁরা অন্যায় করে, তাদের তিনি ঈশ্বরের হয়ে শাস্তি দেন৷ 5 তাই তোমরা শাসনকর্তাদের অনুগত থেকো৷ ঈশ্বরের ক্রোধের ভয়েই য়ে কেবল তাদের অধীনতা স্বীকার করবে তা নয়; কিন্তু তোমাদের বিবেক পরিষ্কার রাখার জন্যও করবে৷ 6 এই জন্য পরস্পরকে তোমরা প্রাপ্য় কর দাও, কারণ শাসনকার্য় পরিচালনা করার জন্যই তারা ঈশ্বর দ্বারা নিযুক্ত আছেন; আর সেই কার্য়্য়ে তাঁরা ব্যস্তভাবে সময় ব্যয় করেন৷ 7 তোমাদের কাছে যার যা প্রাপ্য় তাকে তা দিয়ে দাও৷ য়ে কর আদায় করে তাকে কর দাও; যাদের শ্রদ্ধা করা উচিত তাদের শ্রদ্ধা কর; যাদের সম্মান পাওয়া উচিত তাদের সম্মান কর৷ 8 শুধু পরস্পরের প্রতি ভালবাসার ঋণ ছাড়া কারো কাছে ঋণী থেকো না, কারণ যাঁরা প্রতিবেশীকে ভালবাসে, তারাই ঠিকভাবে বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলছে৷ 9 আমি একথা বলছি কারণ ঈশ্বরের এই আজ্ঞাগুলি অর্থাত্, ‘ব্যভিচার করবে না, নরহত্যা করবে না, চুরি করবে না, অপরের জিনিস আত্মসাত্ করবে না৷’আর অন্য যা কিছু আদেশ তিনি দিয়েছেন সে সবগুলি সংক্ষেপে এই একটি আদেশের মধ্যেই চলে আসে, ‘নিজের মতো তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসো৷’ 10 ভালবাসা কখনও কারোর ক্ষতি করে না, তাই দেখা যাচ্ছে ভালবাসাতেই বিধি-ব্যবস্থা পালন করা হয়৷ 11 এখন কোন্ সময় তা তো তোমাদের জানাই আছে৷ হ্যাঁ, এখন তো ঘুম থেকে জেগে ওঠার সময়, কারণ যখন আমরা খ্রীষ্টে প্রথম বিশ্বাস করেছিলাম তখন অপেক্ষা এখন পরিত্রাণ আমাদের আরো সন্নিকট৷ 12 ‘দিন’ শুরু হতে আর দেরী নেই৷ ‘রাত’ প্রায় শেষ হল তাই জীবন থেকে অন্ধকারের ক্রিয়াসকল পরিত্যাগ করে এস এখন পরিধান করি আলোকের রণসজ্জা৷ 13 লোকরা দিনের আলোয় য়েমন চলে আসে আমরাও তাদের মত সত্ পথে চলি৷ আমরা য়েন হৈ-হল্লা পূর্ণ ভোজে য়োগ না দিই, মাতলামি না করি, য়ৌন দুরাচার উচ্ছৃঙ্খলতা থেকে দূরে থাকি; বিবাদ, ঈর্ষা ও তর্কের মধ্যে না যাই৷ 14 কিন্তু য়েন নব বেশে প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে পরিধান করি ও দৈহিক কামনা বাসনা চরিতার্থ করার চিন্তায় আর মন না দিই৷
1 বিশ্বাসে য়ে দুর্বল, এমন কোন ভাইকে তোমাদের মধ্যে গ্রহণ করতে অস্বীকার করো না৷ তার ভিন্ন ধারণা নিয়ে তার সঙ্গে তর্ক করো না৷ 2 এক এক জন বিশ্বাস করে য়ে তার যা ইচ্ছা হয় এমন সব কিছুই সে খেতে পারে; কিন্তু য়ে বিশ্বাসে দুর্বল সে মনে করে য়ে সে কেবল শাকসব্জী খেতে পারে৷ 3 য়ে ব্যক্তি সব খাবারই খায় সে য়েন য়ে কেবল সব্জীই খায়, তাকে হেয় জ্ঞান না করে৷ আর য়ে মানুষ কেবল সব্জী খায়, তারও উচিত সব খাবার খায় এমন লোককে ঘৃণা না করা, কারণ ঈশ্বর তাকেও গ্রহণ করেছেন৷ 4 তুমি অন্য়ের ভৃত্যের দোষ ধরবে না৷ সে ঠিক করছে না ভুল করছে তা তার মনিবই ঠিক করবেন; বরং প্রভুর দাস নির্দোষই হবে কারণ প্রভু তাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করতে পারেন৷ 5 কেউ হয়তো মনে করে এই দিনটি ঐ দিনটির থেকে ভাল, আবার কেউ মনে করে সব দিনই সমান ভাল৷ প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ মনে তার বিশ্বাস সম্বন্ধে স্থির নিশ্চয় হোক্৷ 6 য়ে কোন দিনকে বিশেষ মর্য়াদা দিয়ে থাকে সে প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে৷ তেমনি য়ে মানুষ সবরকম খাবারই খায়, সেও প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে কারণ সে ওই খাবারের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানায়৷ এদিকে য়ে ব্যক্তি কিছু খাদ্য় গ্রহণে বিরত থাকে সেও তো প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে৷ 7 হ্যাঁ, আমরা সকলেই প্রভুর জন্য বেঁচে থাকি৷ আমরা কেউ নিজের জন্য বেঁচে থাকি না, কেউ নিজের জন্য মরেও যাই না৷ 8 আমাদের বেঁচে থাকা তো প্রভুরই উদ্দেশ্যে বেঁচে থাকা, আমরা যদি মরি তবে তো প্রভুর জন্যই মরি৷ তাই আমরা বাঁচি বা মরি, য়ে ভাবেই থাকি না কেন, আমরা প্রভুরই৷ 9 এইজন্যই খ্রীষ্ট মৃত্যু বরণ করলেন ও পুনরায় বেঁচে উঠলেন, যাতে তিনি মৃত ও জীবিত সকলেরই প্রভু হতে পারেন৷ 10 তাহলে তোমরা কেন খ্রীষ্টেতে তোমার এক ভাইয়ের দোষ ধর? তোমার ভাইয়ের থেকে তুমি ভাল, এমন কথাই বা ভাব কি করে? আমাদের সকলকেই ঈশ্বরের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে৷ আর ঈশ্বর আমাদের বিচার করবেন৷ 11 হ্যাঁ, শাস্ত্রে লেখা আছে:‘প্রত্যেক ব্যক্তি আমার সাক্ষাতে নতজানু হবে৷ প্রত্যেক ওষ্ঠাধর স্বীকার করবে য়ে আমি ঈশ্বর, প্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য, এসব হবেই৷’যিশাইয় 45:23 12 আমাদের সকলকেই ঈশ্বরের কাছে আমাদের জীবনের হিসাব দিতে হবে৷ 13 তাই এস, আমরা অন্য়ের বিচার করা থেকে বিরত হই, বরং আমরা সিদ্ধান্ত নেব য়ে আমরা এমন কিছু করব না যাতে আমাদের কোন ভাই বা বোন হোঁচট খায় ও প্রলোভনে পড়ে পাপ করে৷ 14 আমি প্রভু যীশুতে নিশ্চিতভাবে বুঝেছি য়ে কোন খাবার আসলে অশুচি নয়, তা খাওয়া অন্যায় নয়৷ তবে কেউ যদি সেই খাবার অশুচি ভাবে, তাহলে তার কাছে তা অশুচি৷ 15 তোমার খাদ্য়ে যদি তোমার ভাই আত্মিকভাবে আহত হয় তাহলে বুঝতে হবে য়ে তুমি আর ভালোবাসার পথে চলছ না৷ তুমি এমন কিছু খেও না যা অন্য়ের কাছে গ্রহণয়োগ্য নয়৷ এতে তার বিশ্বাস আঘাত পেতে পারে, কারণ খ্রীষ্ট সেই ব্যক্তির জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন৷ 16 তাহলে তোমার কাছে যা ভাল, তা য়েন অপরের কাছে নিন্দিত না হয়৷ 17 ঈশ্বরের রাজ্য খাদ্য পানীয় নয়, কিন্তু তা ধার্মিকতা, শান্তি ও পবিত্র আত্মাতে আনন্দ৷ 18 য়ে এ বিষয়ে খ্রীষ্টের দাসত্ব করে, সে ঈশ্বরের প্রীতিপাত্র এবং মানুষের কাছেও পরীক্ষাসিদ্ধ৷ 19 তাই সেই সব কাজ যা শান্তির পথ প্রশস্ত করে এবং পরস্পরকে শক্তিশালী করে, এস, আমরা তাই করি৷ 20 নিছক খাদ্য়বস্তু নিয়ে ঈশ্বরের কাজ পণ্ড করো না, কারণ সব খাদ্য়ই শুচি ও খাওয়া যায়, কিন্তু কারো কিছু খাওয়া নিয়ে যদি অন্য়ের পতন ঘটে তাহলে তেমন কিছু খাওয়া অবশ্যই অন্যায়৷ 21 তোমার ভাই যদি হোঁচট খায় ও পাপে পতিত হয়, তাহলে মাংস আহার বা দ্রাক্ষারস পান না করাই শ্রেয়৷ তেমন কোন কাজও না করা ভাল যার ফলে তোমার কোন ভাই বা বোনের পতন ঘটতে পারে ও সে পাপ করে৷ 22 তোমরা যা ভাল বলে বিশ্বাস কর তা তুমি ও তোমার ঈশ্বরের মধ্যেই রাখ; কারণ কেউ যখন ভাল মনে করে কোন কাজ করে এবং সে যা করছে সেই ব্যাপারে যদি তার বিবেক তাকে দোষী না করে, তবে সেই ব্যক্তি ধন্য৷ 23 কিন্তু কোন কিছু খাবার ব্যাপারে যার অন্তরে দ্বিধা থাকে সে যদি তবুও তা খায় তাহলে সে অবশ্যই দোষী, কারণ সে তো নিজের বিবেকের বিরুদ্ধে কাজ করল৷ কেউ যদি বিশ্বাস করতে না পারে য়ে এটা ঠিক তবে সেই কাজ করা পাপ৷
1 আমাদের মধ্যে যাঁরা বিশ্বাসে বলিষ্ঠ হয়েছি তাদের কর্তব্য য়েন যাঁরা বিশ্বাসে সবল তাদের দুর্বলতায় সাহায্য করি, য়েন নিজেদের খুশী করার চেষ্টা না করি৷ 2 আমরা প্রত্যেকে বরং অপরকে খুশী করার চেষ্টা করব, তা করলে তাদের সাহায্য করা হবে৷ তারা য়েন বিশ্বাসে বলবান হয়ে উঠতে পারে, সে চেষ্টা আমাদের অবশ্যই করা উচিত৷ 3 খ্রীষ্টও নিজেকে সন্তুষ্ট করার কথা ভাবেন নি, বরং শাস্ত্র য়েমন বলে: ‘যাঁরা তোমাদের অপমান করেছে, সেই সব অপমান আমার ওপরই এসেছে৷’ 4 শাস্ত্রে বহু আগেই য়ে সব কথা লেখা হয়েছে তা আমাদের শিক্ষা দেবার জন্যই লেখা হয়েছে৷ তা লেখা হয়েছে য়েন তার থেকে ধৈর্য্য ও শক্তি আসে এবং অন্তরে প্রত্যাশা জন্মায়৷ 5 আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বর, যিনি সকল ধৈর্য্য ও উত্সাহের উত্স, তিনি য়েন তোমাদের খ্রীষ্টের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে একমনা হতে সাহায্য করেন৷ 6 এইভাবে তোমরা য়েন সকলে মিলিত কন্ঠে যিনি আমাদের প্রভু যীশুর পিতা, সেই ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করতে পার৷ 7 খ্রীষ্ট তোমাদের গ্রহণ করেছেন, তাই তোমরাও পরস্পরকে গ্রহণ করে কাছে টেনে নাও, এতে ঈশ্বর মহিমান্বিত হবেন৷ 8 মনে রেখো ঈশ্বর ইহুদীদের পিতৃপুরুষদের কাছে য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূর্ণ করার জন্যই খ্রীষ্ট ইহুদীদের দাস হয়েছিলেন, য়েন ঈশ্বর য়ে বিশ্বস্ত তা প্রমাণ হয়৷ 9 খ্রীষ্ট এই কার্য়্য় সাধন করলেন য়েন ‘অইহুদীরা তাঁর দয়া পেয়েছে বলে তাঁর গৌরব করে৷ শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে:‘এই জন্যই অইহুদীদের মধ্যে আমি তোমার গৌরব করব; তোমার নামের প্রশংসা গান করব৷’ গীতসংহিতা 18:49 10 আবার শাস্ত্র বলে,‘অইহুদীরা, তোমরা ঈশ্বরের মনোনীত লোকদের সঙ্গে আনন্দ কর৷’দ্বিতীয় বিবরণ 32:43 11 শাস্ত্র আরো বলে,‘সমস্ত অইহুদীরা প্রভুর প্রশংসা কর; সমস্ত লোক তাঁর প্রশংসা করুক৷’গীতসংহিতা 117:1 12 আবার যিশাইয় বলছেন,‘যিশয়ের একজন বংশধর আসবেন যিনি সমস্ত অইহুদীদের উপর কর্ত্তৃত্ব করবেন; আর অইহুদী জাতিবৃন্দ তাঁর উপরেই আশা রাখবে৷’ যিশাইয় 11:10 13 ঈশ্বর, যিনি তোমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেন, তাঁর ওপর প্রত্যাশা তোমাদের সকলকে আনন্দ ও শান্তিতে ভরপুর করুক৷ তাহলে পবিত্র আত্মার শক্তিতে তোমাদের আশা আরো উপচে পড়বে৷ 14 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি সুনিশ্চিত য়ে তোমরা সবাই উত্তমতায় পূর্ণ৷ আমি জানি য়ে তোমরা সব রকম জ্ঞান সঞ্চয় করেছ, যাতে পরস্পরকে নির্দেশ দিতে পার৷ 15 কিন্তু আমি কতকগুলি ব্যাপার মনে করিয়ে দেবার জন্য সাহসভরে তোমাদের সবাইকে লিখছি, কারণ ঈশ্বর আমাকে এই বিশেষ বরদান করেছেন৷ 16 আমি অইহুদীদের মধ্যে কাজ করার জন্য খ্রীষ্ট যীশুর সেবক হয়েছি৷ আমি যাজকের মত তাদের মাঝে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করি, যাতে পবিত্র আত্মা দ্বারা পবিত্রিকৃত অইহুদীরা ঈশ্বরের গ্রহণয়োগ্য উপহার রূপে গ্রাহ্য় হয়৷ 17 তাই যীশু খ্রীষ্টে আছে এমন একজন হিসাবে ঈশ্বরের কাজ করতে আমি গর্ববোধ করি৷ 18 আমি য়ে নিজে কিছু করেছি, এমন কথা বলি না৷ আমার বাক্য ও কার্য় দ্বারা অইহুদীদের ঈশ্বরের বাধ্য করার জন্য খ্রীষ্ট আমার মাধ্যমে যা করেছেন শুধু তা বলার সাহস আমার আছে৷ 19 তিনি নানা অলৌকিক চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজের দ্বারা এবং পবিত্র আত্মার পরাক্রমে আমার দ্বারা তা পূর্ণ করেছেন৷ তার ফলে আমি জেরুশালেম থেকে শুরু করে ইল্লুরিকা পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় খ্রীষ্ট বিষয়ক সুসমাচার প্রচারের কাজ শেষ করেছি৷ 20 য়েখানে খ্রীষ্টের নাম কখনও বলা হয় নি, সেখানে খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করাই আমার জীবনের লক্ষ্য৷ অন্য়ের গাঁথা ভিতের ওপর আমি গড়ে তুলতে চাই না৷ 21 এ ব্যাপারে শাস্ত্র বলে:‘যাদের কাছে তাঁর সম্বন্ধে কিছুই বলা হয় নি তারা দেখতে পাবে; আর যাঁরা শোনেনি তারা বুঝতে পারবে৷’যিশাইয় 52:15 22 এই জন্যই বহুবার তোমাদের কাছে য়েতে চেয়েও বাধা পেয়েছি৷ 23 কিন্তু এখন এসব এলাকায় আমার কাজ শেষ হয়েছে৷ বহুবছর ধরে তোমাদের সকলের কাছে যাবার ইচ্ছা আমার ছিল৷ 24 তাই স্পেন দেশে যাবার পথে তোমাদের সঙ্গে দেখা করব; ঐ পথ দিয়ে যাবার সময় তোমাদের সঙ্গে দেখা করে কিছু সময় আনন্দে কাটাতে পারব; আশা করি সেই সময়ে তোমরা আমায় সাহায্য করতে পারবে৷ 25 এখন আমি জেরুশালেমে যাচ্ছি য়েন ঈশ্বরের লোকদের সাহায্য করতে পারি৷ 26 জেরুশালেমে ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে য়ে গরীব মানুষরা আছেন তাদের হাতে দেবার জন্য মাকিদনিয়া ও আখায়ার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা কিছু চাঁদা তুলেছেন৷ 27 ওদের সাহায্য করা উচিত মনে করেই মাকিদনিয়া ও আখায়া মণ্ডলীরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাদের সাহায্য করা উচিত, কারণ তারা অইহুদী হলেও ইহুদীদের কাছ থেকে আত্মিক আশীর্বাদের সহভাগীতা পেয়েছে৷ এ বিষয়ে তারা ইহুদীদের কাছে ঋণী৷ 28 আমার এই কাজ শেষ হলে আমি যখন জানব য়ে সেই চাঁদা ঠিকমতো পৌঁচেছে তখন তোমাদের কাছে কিছুক্ষণ থেকে আমি স্পেনে যাব৷ 29 আমি জানি যখন তোমাদের সবার কাছে যাব, তখন খ্রীষ্টের পূর্ণ আশীর্বাদ নিয়েই যাব৷ 30 ভাই ও বোনেরা, তোমাদের কাছে আমার একান্ত মিনতি তোমরা ঈশ্বরের কাছে আমার জন্য প্রার্থনা কর৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দোহাই দিয়ে বলছি, পবিত্র আত্মার ভালোবাসায় প্রণোদিত হয়ে তোমরা আমার জন্য ঈশ্বরের কাছে মিনতি কর৷ 31 প্রার্থনা কর, য়েন যিহূদিয়ায় অবিশ্বাসীদের হাত থেকে আমি রক্ষা পাই৷ প্রার্থনা কর য়েন জেরুশালেমের জন্য আমার সেবা সেখানকার পবিত্র ব্যক্তিরা গ্রহণ করেন৷ 32 তখন ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে আমি খুশি মনেই তোমাদের কাছে যাব এবং তোমাদের সঙ্গে কিছুকাল থেকে বিশ্রাম পাব৷ 33 শান্তিদাতা ঈশ্বর তোমাদের সকলের সঙ্গে সঙ্গে থাকুন৷ আমেন৷
1 এখন আমি খ্রীষ্টেতে আমাদের বোন ফৈবীর জন্য বলছি৷ কিংক্রিয়াস্থ মণ্ডলীতে তিনি একজন বিশেষ সেবিকা৷ 2 আমি অনুরোধ করি তোমরা প্রভুতে তাঁকে গ্রহণ করো৷ ঈশ্বরের লোকরা য়েভাবে অপরকে গ্রহণ করে সেইভাবেই তাঁকে গ্রহণ করো৷ কোন ব্যাপারে যদি তিনি তোমাদের সাহায্য চান তবে তাঁকে সাহায্য করো৷ তিনি অনেক লোককে, এমনকি আমাকেও খুব সাহায্য করেছেন৷ 3 যীশু খ্রীষ্টের সেবায় আমার সহকর্মী প্রিষ্কা ও আক্কিলাকে শুভেচ্ছা জানিও৷ 4 তারা তাদের জীবন বিপন্ন করে আমার জীবন বাঁচিয়েছিল৷ কেবল আমিই য়ে তাদের কাছে কৃতজ্ঞ তা নয়, সমগ্র অইহুদী মণ্ডলীও তাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে৷ 5 তাদের গৃহে য়ে মণ্ডলী সমবেত হন, তাদেরও শুভেচ্ছা জানিও৷ আমার প্রিয় বন্ধু ইপেনিতকেও শুভেচ্ছা জানাও, এশিয়ার মধ্যে সেই প্রথম ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে৷ 6 মরিয়মকে শুভেচ্ছা জানিও কারণ সে তোমাদের সকলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে৷ 7 আন্দ্রনীক ও যূনিয়কে শুভেচ্ছা জানিও, তাঁরা আমার স্বজাতি, আমার সঙ্গে তাঁরা কারাগারে বন্দী ছিলেন৷ তাঁরা প্রেরিতদের মধ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তি৷ আমার আগেই তাঁরা খ্রীষ্টে ছিলেন৷ 8 প্রভুতে আমার প্রিয় বন্ধু আমপ্লিয়াতকে শুভেচ্ছা জানিও৷ 9 উর্ব্বানকে শুভেচ্ছা জানিও, তিনি খ্রীষ্টতে আমাদের সহকর্মী৷ আমার প্রিয় বন্ধু স্তাখুকে শুভেচ্ছা জানিও৷ 10 আপিল্লিকে শুভেচ্ছা জানিও, তিনি একজন পরীক্ষা সিদ্ধ খ্রীষ্টীয়ান৷ আরিষ্টবুলের পরিবারের সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 11 হেরোদিয়ান যিনি আমার মতোই একজন ইহুদী, তাঁকে শুভেচ্ছা জানিও; নার্কিসের পরিবারের মধ্যে যাঁরা প্রভুর, তাদের সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 12 ত্রুফেণা এবং ক্রুফোষাকে শুভেচ্ছা জানিও, এই মহিলারা প্রভুর জন্য খুবই পরিশ্রম করেন৷ আমার সেই প্রিয় বান্ধবী পর্ষীকে শুভেচ্ছা জানিও, যিনি প্রভুর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন৷ 13 রূফকে শুভেচ্ছা জানিও৷ সে প্রভুতে এক বিশেষ ব্যক্তি, তার মাকে শুভেচ্ছা জানিও৷ তিনিও আমার মায়ের মতো; 14 আর অনুংক্রিত, ফ্রিগোন, হর্ম্মিপাত্রোবা, র্হম্মা ও তাদের সঙ্গে সমবিশ্বাসী ভাইদেরও আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 15 ফিললগ, থুলিয়া, নীরিয় ও তার বোন ওলুম্প ও তাঁদের সঙ্গে য়ে সব ঈশ্বরের ভক্তরা আছেন তাঁদেরও আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 16 পবিত্র চুম্বন দিয়ে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানিও৷ এখানকার সব খ্রীষ্টমণ্ডলী তোমাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 17 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি,যারা দলাদলি সৃষ্টি করে ও পাপকে প্ররোচিত করে তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখতে৷ তোমরা য়ে সত্য শিক্ষা পেয়েছ তারা তার বিরোধী৷ এমন লোকদের থেকে দূরে থেকো৷ 18 এমন লোকরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সেবা করে না৷ তারা নিজেদের খুশী করতেই কাজ করে চলেছে৷ তারা মোলায়েম ও মিষ্টি-মিষ্টি কথা বলে সেই লোকদের ভুলিয়ে থাকে, যাঁরা মন্দ জানে না৷ 19 তোমাদের বাধ্যতার কথা সবাই শুনেছে আর সেইজন্য আমি তোমাদের ওপরে খুশী হয়েছি৷ আমি চাই তোমরা সবাই যা ভাল তা চিনে গ্রহণ কর এবং মন্দ থেকে দূরে থাক৷ 20 শান্তির ঈশ্বর শীঘ্রই তোমাদের পায়ের নীচে শয়তানকে পিষে ফেলবেন৷ আমাদের প্রভু যীশুর অনুগ্রহ তোমাদের সবার সঙ্গে থাকুক৷ 21 আমার সহকর্মী তীমথি তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন; আর আমার মত জাতিতে ইহুদী লুকিয়, যাসোন ও সোষিপাত্র তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 22 আমি তর্ত্তিয়, পৌলের হয়ে এই চিঠিটি লিখছি, আমিও প্রভুর নামে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাই৷ 23 আমি য়াঁর আতিথ্য় গ্রহণ করেছি, য়াঁর বাড়িতে গোটা মণ্ডলী সমবেত হয় সেই গাইয়াসও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ ইরাস্ত, যিনি এই শহরের কোষাধ্যক্ষ ও আমাদের ভাই কার্ত্ত তাঁরাও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 24 25 যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে য়ে সুসমাচার আমি প্রচার করি, সেই সুসমাচারের মধ্য দিয়ে তোমাদের স্থির রাখবার ক্ষমতা ঈশ্বরের আছে৷ অনেক যুগ ধরে ঈশ্বর তাঁর গোপন উদ্দেশ্যের বিষয় কারোর কাছে জ্ঞাত করেন নি; কিন্তু এখন সুসমাচারের মাধ্যমে তা প্রকাশ পেয়েছে; আর আমি সেইমত তা প্রচার করেছি৷ 26 অনন্ত ঈশ্বরের আদেশ মতো ভাববাদীদের বাণীর মধ্য দিয়ে সব জাতির লোকদের কাছে তা জানানো হয়েছে য়েন তারা খ্রীষ্টের ওপর বিশ্বাস করে ঈশ্বরের বাধ্য হতে পারে৷ 27 যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে চিরকাল একমাত্র প্রজ্ঞাবান ঈশ্বরের মহিমা হোক৷ আমেন৷করিন্থীয়দের প্রতি প্রথম পত্র
1 পৌল, যিনি ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযাযী খ্রীষ্ট যীশুর প্রেরিতরূপে আহুত তাঁর কাছ থেকে ও আমাদের ভাই সোস্থিনির কাছ থেকে এই পত্র৷ 2 করিন্থের ঈশ্বরের মণ্ডলী ও যারা খ্রীষ্ট যীশুতে পবিত্র বলে গন্য হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে এই পত্র৷ তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র লোক হবার জন্য আহুত হয়েছ৷ সব জায়গায় য়ে সব লোকেরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে ডাকে তাদের সঙ্গে তোমরাও আহুত৷ তিনি তাদেরও এবং আমাদের ও প্রভু৷ 3 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি য়েন তোমাদের প্রতি বর্তায়৷ 4 খ্রীষ্ট যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বর য়ে অনুগ্রহ তোমাদের দিয়েছেন, তার জন্য আমি সবসময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি৷ 5 খ্রীষ্ট যীশুর আশীর্বাদে তোমরা সব কিছুতে, সমস্ত রকম বলবার ক্ষমতায় ও জ্ঞানে উপচে পড়ছ৷ 6 এইভাবে খ্রীষ্ট সম্পর্কে সত্য তোমাদের মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে৷ 7 এর ফলে ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া বরদানের কোন অভাব তোমাদের নেই৷ তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অপেক্ষায় আছ; 8 তিনি তোমাদের শেষ পর্যন্ত স্থির রাখবেন, য়েন আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ফিরে আসার দিন পর্যন্ত তোমরা নির্দোষ থাক৷ 9 ঈশ্বর বিশ্বস্ত; তিনিই সেইজন য়াঁর দ্বারা তোমরা তাঁর পুত্র আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সহভাগীতা লাভের জন্য আহুত হয়েছ৷ 10 কিন্তু আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোমাদের কাছে অনুরোধ করছি, তোমাদের পরস্পরের মধ্যে য়েন মতৈক্য থাকে, দলাদলি না থাকে৷ তোমরা সকলে য়েন এক মন-প্রাণ হও ও সকলের উদ্দেশ্য একই হয়৷ 11 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি ক্লোযীর বাড়ির লোকদের কাছে শুনেছি য়ে তোমাদের মধ্যে নানা বাক্-বিতণ্ডা লেগেই আছে৷ 12 আমি যা বলতে চাই তা হল এই: তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আমি আপল্লোর,’ আর কেউ কেউ বলে, ‘আমি খ্রীষ্টের অনুগামী৷’ 13 খ্রীষ্টকে কি ভাগ করা যায়? পৌল কি তোমাদের জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন? তোমরা কি পৌলের নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলে? 14 আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই য়ে, আমি ক্রীষ্প ও গাযঃ ছাড়া তোমাদের আর কাউকে বাপ্তিস্ম দিই নি৷ 15 যাতে কেউ বলতে না পারে য়ে তোমরা আমার নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছ৷ 16 তবে হ্যাঁ, আমি স্তিফানের পরিবারকেও বাপ্তিস্ম দিয়েছি৷ এছাড়া আর কাউকে বাপ্তিস্ম দিয়েছি বলে আমার জানা নেই৷ 17 কারণ খ্রীষ্ট আমাকে বাপ্তিস্ম দেবার জন্য নয় কিন্তু সুসমাচার প্রচারের জন্য পাঠিয়েছেন৷ তিনি আমাকে সেই সুসমাচার জাগতিক জ্ঞানের ভাষায় প্রচার করতে পাঠান নি, যাতে খ্রীষ্টের ক্রুশের পরাক্রম বিফল না হয়৷ 18 যারা ধ্বংসের পথে চলেছে তাদের কাছে ক্রুশের এই শিক্ষা মুর্খতা; কিন্তু আমরা যারা উদ্ধার লাভ করছি আমাদের কাছে এ ঈশ্বরের পরাক্রমস্বরূপ৷ 19 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:‘আমি জ্ঞানীদের জ্ঞান নষ্ট করব আর বুদ্ধিমানদের বুদ্ধি ব্যর্থ করব৷’ যিশাইয় 29:14 20 জ্ঞানী লোক কোথায়? শিক্ষিত লোকই বা কোথায়? এ যুগের দার্শনিকই বা কোথায়? ঈশ্বর কি জগতের এই সব জ্ঞানকে মূর্খতায় পরিণত করেন নি? 21 তাই ঈশ্বর তাঁর প্রজ্ঞায় যখন বুঝলেন য়ে জগত তার নিজের জ্ঞান অনুসারে ঈশ্বরকে পেল না, তখন ঈশ্বর স্থির করলেন য়ে প্রচারিত বার্তার মূর্খতায় যারা বিশ্বাস করে তাদের তিনি উদ্ধার করবেন৷ 22 কারণ ইহুদীরা অলৌকিক চিহ্ন চায়, আর গ্রীকরা প্রজ্ঞার অন্বেষণ করে৷ 23 কিন্তু আমরা সেই খ্রীষ্ট, যিনি ক্রুশে প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁর সম্বন্ধে প্রচার করি৷ ইহুদীদের কাছে তা প্রবল বাধাস্বরূপ আর অইহুদীদের কাছে তা মূর্খতাস্বরূপ৷ 24 কিন্তু ইহুদী ও অইহুদী, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন তাদের সকলের কাছে খ্রীষ্টই ঈশ্বরের পরাক্রম ও প্রজ্ঞাস্বরূপ৷ 25 কারণ ঈশ্বরের য়ে মূর্খতা তা মানুষের জ্ঞানের থেকে অনেক বেশী জ্ঞানসম্পন্ন; আর ঈশ্বরের য়ে দুর্বলতা তা মানুষের শক্তি থেকে অনেক শক্তিশালী৷ 26 আমার ভাই ও বোনেরা, ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন৷ একটু ভেবে দেখো তো! জগতের বিচারে তোমরা অনেকে য়ে জ্ঞানী ছিলে তা নয়, ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলে তাও নয় বা অনেকে য়ে অভিজাত বংশে জন্মেছিলে তা নয়; 27 কিন্তু ঈশ্বর জগতের মূর্খ বিষয় সকল মনোনীত করলেন যাতে সেগুলি জ্ঞানীদের লজ্জা দেয়৷ ঈশ্বর জগতের দুর্বল বিষয় সকল মনোনীত করলেন যাতে ঐগুলি বলবানদের লজ্জা দেয়৷ 28 জগতের কাছে যা তুচ্ছ ও ঘৃণিত, যার কোন মূল্যই নেই, সেই সব ঈশ্বর মনোনীত করলেন, যাতে যা কিছু জগতের ধারণায় মূল্যবান সেই সমস্তকে তিনি ধ্বংস করতে পারেন৷ 29 ঈশ্বর এই কাজ করলেন যাতে কেউ তাঁর সামনে গর্ব করতে না পারে৷ 30 ঈশ্বরই তোমাদের খ্রীষ্ট যীশুর সাথে যুক্ত করেছেন৷ খ্রীষ্টই আমাদের কাছে ঈশ্বরের দেওয়া জ্ঞান, তিনিই আমাদের ধার্মিকতা, পবিত্রতা ও যুক্তি৷ 31 শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে, ‘য়ে কেউ গর্ব করে সে প্রভুতেই গর্ব করুক৷’
1 আমার ভাই ও বোনেরা, যখন আমি তোমাদের কাছে গিয়ে ঈশ্বরের সত্য প্রচার করেছিলাম, তখন আমি তা অলঙ্কারযুক্ত ও বুদ্ধিদীপ্ত ভাষায় প্রচার করি নি৷ 2 কারণ আমি স্থির করেছিলাম য়ে কেবল যীশু খ্রীষ্ট এবং ক্রুশের ওপর তাঁর মৃত্যুর কথাই তোমাদের জানাবো৷ 3 আমি তোমাদের কাছে দুর্বলের মতো হয়ে কাঁপতে কাঁপতে গিয়েছিলাম৷ 4 তাই আমার শিক্ষা ও আমার প্রচার প্ররোচনামূলক জ্ঞানের কথায় ভরা ছিল না, বরং আমার শিক্ষাগুলিতে আত্মার শক্তির প্রমাণ ছিল, 5 যাতে তোমাদের বিশ্বাস য়েন মানুষের জ্ঞানের ওপর নির্ভর না করে ঈশ্বরের শক্তির উপর নির্ভর করে৷ 6 কিন্তু তবু আমরা পরিপক্কদের কাছে জ্ঞানের কথা বলি, সেই জ্ঞান পার্থিব জ্ঞানের মতো নয়, তা এই যুগের শাসকদের জ্ঞানের মতো নয়, সেই শাসকরা তো শক্তিহীন হয়ে পড়েছে৷ 7 কিন্তু আমরা নিগূঢ়তত্ত্বে ঈশ্বরের জ্ঞানের কথা বলি৷ সেই জ্ঞান গুপ্ত ছিল এবং ঈশ্বর আমাদের মহিমান্বিত করবেন বলে এবিষয় সৃষ্টির পূর্বেই স্থির করে রেখেছিলেন৷ 8 এই যুগের শাসকদের মধ্যে কেউ তো বোঝেনি, যদি বুঝত তবে তারা কখনও মহিমাপূর্ণ প্রভুকে ক্রুশে বিদ্ধ করত না৷ 9 কিন্তু শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে:‘ঈশ্বরকে যারা ভালবাসে, তাদের জন্য তিনি যা প্রস্তুত করেছেন, কোন মানুষ তা কখনও চোখে দেখে নি, কানে শোনে নি, এমন কি কল্পনাও করে নি৷’যিশাইয় 64:4 10 কিন্তু আমাদের কাছে ঈশ্বর তাঁর আত্মার দ্বারা তা প্রকাশ করেছেন৷ কারণ আত্মা সব কিছুর অনুসন্ধান করেন, এমন কি ঈশ্বরের নিগূঢ় তত্ত্বের অনুসন্ধান করেন৷ 11 বিষয়টি এই রকম: কোন মানুষ অপরে কি চিন্তা করছে তা জানে না৷ কেবল সেই ব্যক্তির আত্মা, য়ে তার অন্তরে থাকে সেই জানে৷ তেমনি ঈশ্বর কি চিন্তা করেন তা কেউ জানে না, কেবল ঈশ্বরের আত্মা জানেন৷ 12 আমরা জগতের আত্মাকে গ্রহণ করি নি কিন্তু ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে আত্মা এসেছেন তাঁকেই আমরা পেয়েছি, য়েন ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আমাদের যা যা দান করেছেন তা জানতে পারি৷ 13 সেই সব বিষয়ে বলতে গিয়ে আমরা মানবিক জ্ঞানের শিক্ষানুরূপ কথায় নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মার শিক্ষানুসারে বলেছি, আত্মিক বিষয় বোঝাতে আত্মিক কথাই ব্যবহার করছি৷ 14 যার মধ্যে ঈশ্বরের আত্মা নেই সে, আত্মা থেকে য়ে বিষয়গুলি আসে তা গ্রহণ করতে পারে না, কারণ তার কাছে সে সব মূর্খতা৷ য়ে ব্যক্তির মধ্যে পবিত্র আত্মা নেই সে আত্মিক কথা বুঝতে পারে না, কারণ সেই বিষয়গুলি কেবল, আত্মিকভাবেই বিচার করা যায়৷ 15 কিন্তু আত্মিক ব্যক্তি সকল বিষয়ে বিচার করতে পারে৷ অন্য কেউ তার সম্বন্ধে বিচার করতে পারে না৷ কারণ শাস্ত্র বলছে: 16 ‘কে প্রভুর মন জেনেছে য়ে, তাঁকে নির্দেশ দিতে পারে?’ যিশাইয় 40:13কিন্তু খ্রীষ্টের মন আমাদের আছে৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের সঙ্গে আত্মিক লোকদের মতো কথা বলতে পারি নি৷ খ্রীষ্টীয় জীবনে তোমরা শিশু বলে তোমাদের কাছে জাগতিক ভাবাপন্ন লোকদের মতো কথা বলছি৷ 2 আমি তোমাদের শক্ত কোন খাদ্য না দিয়ে তোমাদের দুধ পান করিয়েছি, কারণ তখনও তোমরা শক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিলে না; আর এমন কি তোমরা এখনও প্রস্তুত হও নি৷ 3 তোমরা এখনও আত্মিক লোক হয়ে ওঠো নি৷ তোমরা আজও জাগতিক ভাবাপন্ন, কারণ তোমাদের মধ্যে ঈর্ষা ও বিবাদ রয়েছে, আর তাতেই জানা যায় য়ে তোমরা আত্মিক লোক নও; তোমরা জাগতিক লোকদের মতোই চলছ৷ 4 কারণ তোমাদের মধ্যে যখন কেউ বলে, ‘আমি পৌলের লোক,’ আবার কেউ বলে, ‘আমি আপল্লোর লোক’ তখন কি তোমরা জাগতিক লোকদের মতোই ব্যবহার করছ না? 5 আপল্লো কে? আর পৌলই বা কে? আমরা ঈশ্বরের দাস মাত্র, যাদের দ্বারা তোমরা বিশ্বাসী হয়েছ৷ প্রভু আমাদের এক এক জনকে য়েমন কাজ দিয়েছেন আমরা তেমন করেছি৷ 6 আমি বীজ বুনেছি, আপল্লো জল দিয়েছেন; কিন্তু ঈশ্বরই বৃদ্ধি দান করেছেন৷ 7 তাই য়ে বীজ বোনে বা য়ে জল দেয় সে কিছু নয়, কিন্তু ঈশ্বর, যিনি বৃদ্ধি দান করেন তিনিই সব৷ 8 য়ে বীজ বোনে ও য়ে জল দেয় তাদের উদ্দেশ্য এক; তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের কর্ম অনুসারে ফল পাবে৷ 9 কারণ আমরা পরস্পর ঈশ্বরেরই সহকর্মী৷ তোমরা এক শস্যক্ষেত্রের মতো, যার মালিক স্বয়ং ঈশ্বর৷ তোমরা ঈশ্বরের গৃহ৷ 10 ঈশ্বর আমায় য়ে ক্ষমতা দিয়েছেন সেই অনুসারে আমি অভিজ্ঞ স্থপতির মতো ভীত গেঁথেছি৷ কিন্তু অন্যেরা তার ওপর গাঁথছে, তবে প্রত্যেকে য়েন লক্ষ্য রাখে কিভাবে তারা তার ওপর গাঁথে৷ 11 য়ে ভীত গাঁথা হয়েছে তা ছাড়া অন্য ভিত্তিমূল কেউ স্থাপন করতে পারে না, সেই ভীত হচ্ছেন যীশু খ্রীষ্ট৷ 12 এই ভীতের ওপরে কেউ যদি সোনা, রূপো, মূল্যবান পাথর, কাঠ, খড় বা বিছালি দিয়ে গাঁথে 13 তবে প্রত্যেক লোকের নিজস্ব কাজ স্পষ্টরূপে প্রকাশ পাবেই৷ সেই বিচারের দিনতা প্রকাশ করে দেবে, কারণ সেই দিনটি আসবে আগুন নিয়ে আর সেই আগুনই প্রত্যেকের কাজ কি রকম তা যাচাই করবে৷ 14 য়ে যা গেঁথেছে তা যদি টিকে থাকে তবে সে পুরস্কার পাবে, 15 আর যদি কারোর কাজ পুড়ে যায় তবে তাকে ক্ষতি স্বীকার করতে হবে৷ সে নিজে রক্ষা পাবে; কিন্তু তার অবস্থা আগুনের মধ্য দিয়ে পার হয়ে আসা লোকের মতো হবে৷ 16 তোমরা কি জান না য়ে তোমরা ঈশ্বরের মন্দির; আর ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের মধ্যে বাস করেন? 17 যদি কেউ ঈশ্বরের মন্দির ধ্বংস করে তবে ঈশ্বর তাকে ধ্বংস করবেন, কারণ ঈশ্বরের মন্দির পবিত্র আর সেই মন্দির তোমারই৷ 18 তোমরা নিজেদের ফাঁকি দিও না৷ তোমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজেকে এই জগতের দিক দিয়ে জ্ঞানী মনে করে, তবে সে মূর্খ হলেও য়েন প্রকৃত জ্ঞানী হতে পারে৷ 19 কারণ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এই জগতের জ্ঞান মূর্খতা স্বরূপ৷ শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘তিনি (ঈশ্বর) জ্ঞানীদের তাদের ধূর্ততায় ধরে ফেলেন৷’ 20 আবার লেখা আছে, ‘জ্ঞানীদের সমস্ত চিন্তাই য়ে অসার তা প্রভু জানেন৷’ 21 তাই কেউ য়েন মানুষকে নিয়ে গর্ব না করে, কারণ সবই তো তোমাদের; 22 তা সে পৌল, আপল্লো, কৈফা (পিতর) হোক বা এই জগত্ জীবন বা মৃত্যুই হোক৷ বর্তমান বা ভবিষ্যত যা কিছু বল সব কিছু তোমাদের, 23 আর তোমরা খ্রীষ্টের ও খ্রীষ্ট ঈশ্বরের৷
1 লোকদের কাছে আমাদের পরিচয় এই হোক য়ে, আমরা খ্রীষ্টের সেবক এবং আমরা ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্বরূপ সম্পদের ভারপ্রাপ্ত মানুষ৷ 2 যারা এই সম্পদের ভারপ্রাপ্ত মানুষ তারা এই কাজে বিশ্বস্ত কিনা তা দেখতে হবে৷ 3 তোমরা বা কোন মানুষের বিচার সভা আমার বিচার করুক তাতে আমার কিছু যায় আসে না, এমন কি আমি আমার নিজেরও বিচার করি না৷ 4 আমার বিবেক পরিষ্কার, তবুও এতে আমি নির্দোষ প্রতিপন্ন হই না৷ প্রভুই আমার বিচার করেন৷ 5 তাই যথার্থ সময়ের আগে অর্থাত্ প্রভু আসার আগে, তোমরা কোন কিছুর বিচার করো না৷ আজ যা কিছু অন্ধকারে লুকানো আছে তিনি তা আলোতে প্রকাশ করবেন; আর তিনি মানুষের মনের গুপ্ত বিষয় জানিয়ে দেবেন৷ 6 ভাই ও বোনেরা, তোমরা য়েন বুঝতে পার তাই আপল্লো ও আমার উদাহরণ দিয়ে এইসব কথা বললাম, ‘য়েন তোমরা শেখা য়ে শাস্ত্রে যা লেখা আছে তার বাইরে য়েতে নেই৷’ তাহলে তোমরা একজনের বিরুদ্ধে অন্য জনকে নিয়ে গর্ব করবে না৷ 7 তুমি য়ে অন্যদের থেকে ভাল তা কে বলেছে? আর তুমি যা ঈশ্বরের কাছ থেকে দান হিসাবে পাও নি, এমনই বা কি তোমার আছে? আর যখন তুমি সব কিছু দান হিসেবে পেয়েছ, তখন দান হিসেবে পাও নি, কেন এমন গর্ব করছ? 8 তোমরা মনে করছ, তোমাদের যা কিছু প্রযোজন তোমরা এখনই সে সব পেয়ে গিয়েছ৷ তোমরা মনে কর তোমরা এখন ধনী হয়ে গিয়েছ; আর আমাদের ছাড়াই তোমরা রাজা হয়ে গিয়েছ৷ অবশ্য সত্যি সত্যিই তোমরা রাজা হয়ে গেলে ভালোই হত! তাহলে আমরাও তোমাদের সঙ্গে রাজা হতে পারতাম৷ 9 হত্যা করা হবে বলে যাদের মিছিলের শেষে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়, আমার মনে হয় ঈশ্বর আমাদের অর্থাত্ প্রেরিতদের ঠিক তেমনি সকলের শেষে রেখেছেন৷ আমরা সারা জগতের কাছে অর্থাত্ স্বর্গদূতদের ও মানুষের কাছে য়েন দেখার সামগ্রী হয়েছি৷ 10 আমরা খ্রীষ্টের জন্য মূর্খ হয়েছি, আর তোমরা খ্রীষ্টেতে বুদ্ধিমান হয়েছ৷ আমরা দুর্বল, কিন্তু তোমরা বলবান৷ তোমরা সম্মান লাভ করেছ, কিন্তু আমরা অসম্মানিত৷ 11 এই মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কষ্ট পাচ্ছি৷ আমাদের পরণে জীর্ণ বস্ত্র, আমাদের চপেটাঘাত করা হচ্ছে, আমাদের বাসস্থান বলতে কোন কিছু নেই৷ 12 জীবিকার জন্য আমরা নিজের হাতে কঠিন পরিশ্রম করছি৷ লোকে আমাদের নিন্দা করলে আমরা তাদের আশীর্বাদ করি, যখন নির্য়াতন করে তখন আমরা তা সহ্য করি৷ 13 কেউ অপবাদ দিলে তার সঙ্গে ভাল কথা বলি৷ আজ পর্যন্ত আমরা য়েন জগতের আবর্জনা ও দুনিয়ার জঞ্জাল হয়ে রয়েছি৷ 14 তোমাদের লজ্জা দেবার জন্য আমি এসব কথা লিখছি না বরং আমার প্রিয় সন্তান হিসাবে সাবধান করার জন্যই লিখছি৷ 15 কারণ তোমাদের খ্রীষ্টে দশ হাজার গুরু থাকতে পারে, কিন্তু তোমাদের পিতা অনেক নেই৷ আমি খ্রীষ্ট যীশুতে সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমে তোমাদের আত্মিক পিতা হয়েছি৷ 16 তাই আমি তোমাদের বিনতি করছি, তোমরা আমার অনুগামী হও৷ 17 এই জন্যই আমি প্রভুতে আমার প্রিয় ও বিশ্বস্ত সন্তান হিসাবে তীমথিয়কে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি৷ খ্রীষ্ট যীশুতে আমি য়ে সব পথে চলি তা সে তোমাদের মনে করিয়ে দেবে৷ প্রত্যেক জায়গায় প্রত্যেক মণ্ডলীতে আমি সেই পথের বিষয় শিক্ষা দিয়েছি৷ 18 তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এই মনে করে খুব গর্ব করে বেড়াচ্ছে য়ে আমি তোমাদের কাছে আসছি না৷ 19 যাই হোক যদি প্রভুর ইচ্ছা হয় তবে খুব শিগ্গিরই আমি তোমাদের কাছে আসব এবং এই দান্ভিক লোকদের কথা শুনতে নয়, তাদের ক্ষমতা কি তা জানব৷ 20 কারণ ঈশ্বরের রাজ্য কেবল কথার ব্যাপার নয়, তা পরাক্রমেরও৷ 21 তোমরা কি চাও?তোমরা কি চাও য়ে শাস্তি দিতে আমি তোমাদের কাছে বেত নিয়ে আসি, অথবা ভালবাসা ও শান্ত মনোভাবে আসি?
1 একথা সত্যি শোনা যাচ্ছে য়ে তোমাদের মধ্যে য়ৌন পাপ রয়েছে৷ এমন য়ৌন পাপ যা বিধর্মীদের মধ্যেও দেখা যায় না; একজন নাকি তার সত্মার সঙ্গে অবৈধ জীবনযাপন করছে৷ 2 তোমরা তবুও নিজেদের বিষয়ে গর্ব করছ৷ এর পরিবর্তে তোমাদের কি মর্মাহত হওয়া উচিত ছিল না? এমন পাপ কাজ য়ে করেছে তাকে তোমাদের সহভাগীতা থেকে বের করে দেওয়া উচিত ছিল৷ 3 দৈহিকভাবে আমি উপস্থিত না থাকলেও আত্মাতে আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি৷ য়ে এই রকম অন্যায় কাজ করেছে, তোমাদের মধ্যে উপস্থিত থেকেই আমি তার বিচার করেছি৷ 4 প্রভু যীশুর নামে তোমরা একত্রিত হও৷ সে সভায় আমি আত্মাতে উপস্থিত থাকব, আর প্রভু যীশুর পরাক্রম তোমাদের মধ্যে বিরাজ করবে৷ 5 তখন সেই লোককে শাস্তির জন্য শয়তানের হাতে সঁপে দিও য়েন তার পাপময় দেহ ধ্বংস হয়; কিন্তু য়েন প্রভু যীশুর দিনে তার আত্মা উদ্ধার লাভ করে৷ 6 তোমাদের গর্ব করা শোভা পায় না, তোমরা তো এ কথা জান য়ে, ‘একটুখানি খামির ময়দার সমস্ত তালটাকে ফাঁপিয়ে তোলে৷’ 7 তোমাদের মধ্য থেকে পুরানো খামির বের করে ফেল, য়েন তোমরা এক নতুন তাল হতে পার৷ খ্রীষ্টীয়ান হিসাবে তোমরা তো খামিরবিহীন রুটির মতোই, কারণ খ্রীষ্ট, যিনি আমাদের নিস্তারপর্বীয় মেষশাবক, তিনি আমাদের জন্য বলি হয়েছেন৷ 8 তাই এস, আমরা নিস্তারপর্বের ভোজ সেই রুটি দিয়ে পালন করি যার মধ্যে সেই পুরানো খামির নেই৷ সেই পুরানো খামির হল পাপ ও দুষ্টতা; কিন্তু এস আমরা সেই রুটি গ্রহণ করি যার মধ্যে খামির নেই, এ হল আন্তরিকতা ও সত্যের রুটি৷ 9 আমার আগের চিঠিতে আমি তোমাদের লিখেছিলাম, য়েন তোমরা য়ৌন পাপে লিপ্ত লোকেদের সঙ্গে মেলামেশা না কর৷ 10 তবে হ্যাঁ, এই জগতের যারা নষ্ট চরিত্রের লোক, লোভী, ঠগবাজ বা প্রতিমাপূজক তাদের কথা অবশ্য বলিনি, কারণ তাহলে তো তোমাদের জগতের বাইরে চলে য়েতে হবে৷ 11 তবে আমি এখন লিখছি য়ে, য়ে কেউ নিজেকে বিশ্বাসী বলে পরিচয় দেয়, অথচ নষ্ট চরিত্রের লোক, লোভী, প্রতিমাপূজক, নিন্দুক, মাতাল বা ঠগবাজ এরকম লোকের সঙ্গে মেলামেশা করো না৷ এমন কি তার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করো না৷ 12 বাইরের লোকদের বিচার করার আমার কি দরকার? কিন্তু মণ্ডলীর ভেতরের লোকদের বিচার করা কি তোমাদের উচিত নয়? যারা মণ্ডলীর বাইরের লোক তাদের বিচার ঈশ্বর করবেন৷ শাস্ত্র বলছে, ‘তোমাদের মধ্য থেকে দুষ্ট লোককে বের করে দাও৷’ 13
1 তোমাদের মধ্যে কারো যদি অপরের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকে তবে সে কোন সাহসে ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের কাছে না গিয়ে আদালতে বিচারকদের অর্থাত্ অধার্মিকদের কাছে যায়? 2 তোমরা নিশ্চয় জান য়ে ঈশ্বরের লোকরা জগতের বিচার করবে৷ তোমাদের দ্বারাই যখন জগতের বিচার হবে, তখন তোমরা কি এই সামান্য বিষয়ের বিচার করার অযোগ্য? 3 তোমরা কি জান না য়ে আমরা স্বর্গদূতদেরও বিচার করব? তাই যদি হয় তবে তো এই জীবনের বিষয়গুলি সম্পর্কেও আমরা নিশ্চিতভাবে বিচার করতে পারি৷ 4 তাই তোমাদের নিজেদের মধ্যে যদি কোন নালিশ থাকে, তবে যারা মণ্ডলীর লোক নয় তাদেরই কি তোমরা বিচার করার জন্য ঠিক করবে? 5 তোমাদের লজ্জা দেবার জন্য আমি এই কথা বলছি: এটা খুব খারাপ, তোমাদের মধ্যে সত্যিই কি এমন কোন জ্ঞানী লোক নেই য়ে ভাইদের মধ্যে বিবাদ বাধলে তার মীমাংসা করে দিতে পাবে? 6 কিন্তু এক ভাই অন্য ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছে, তাও আবার অবিশ্বাসীদের সামনে! 7 তোমরা য়ে একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করছ এতে প্রমাণ হচ্ছে য়ে তোমরা পরাস্ত হয়েছ৷ তার চেয়ে ভাল হয় যদি তুমি কাউকে তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় করতে দাও৷ 8 কিন্তু তোমরা নিজেরাই অন্যায় করছ, তোমরাই বঞ্চনা করছ! আর তা তোমাদের বিশ্বাসী খ্রীষ্টীয়ান ভাইদের প্রতিই করছ! 9 তোমরা নিশ্চয় জান য়ে ঈশ্বরের রাজ্যে অধার্মিক লোকদের কোন স্থান নেই? নিজেদের ঠকিও না! যারা ব্যভিচারী, অনৈতিক য়ৌনচারী, যারা প্রতিমার পূজা করে, যারা পুংশ্চলী ও পুংসমকারী, ঈশ্বরের রাজ্যে এদের কোন অধিকার নেই৷ সেই রকম যারা চোর, লোভী, মাতাল, যারা পরনিন্দা করে ও যারা প্রতারক তারা ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হবে না৷ 10 11 তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এই ধরণের লোক ছিলে, কিন্তু তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে ও ঈশ্বরের আত্মায় নিজেদের ধৌত করেছ, পবিত্র হয়েছ, তোমরা ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছ৷ 12 ‘সব কিছু করার অধিকার আমার আছে,’ কিন্তু সব কিছু করা য়ে হিতকর তা নয়৷ হ্যাঁ, ‘সব কিছু করার অধিকার আমার আছে,’ কিন্তু আমি কোন কিছুর দাস হব না৷ 13 খাবার তো পেটের জন্য, আর পেট তো খাবারের জন্য, কিন্তু ঈশ্বর এদের উভয়েরই লোপ করবেন৷’ আমাদের দেহ য়ৌন পাপ কার্য়ের জন্য নয়, প্রভুরই জন্য আর প্রভুও এই দেহের জন্য৷ 14 ঈশ্বর আপন পরাক্রমের দ্বারা প্রভু যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে উঠিয়েছেন, তিনি আমাদেরও ওঠাবেন৷ 15 তোমরা কি জান না য়ে তোমাদের দেহ খ্রীষ্টের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্বরূপ? তাহলে কি তোমরা খ্রীষ্টের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে বেশ্যার দেহের সঙ্গে যুক্ত করবে? 16 না, কখনই না৷ তোমরা কি জান না, য়ে বেশ্য়ার সঙ্গে যুক্ত হয় সে তার সঙ্গে এক দেহ হয়? কারণ শাস্ত্র বলছে, ‘তারা দুজন এক দেহ হবে৷’ 17 কিন্তু য়ে প্রভুর সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে, সে তাঁর সঙ্গে আত্মায় এক হয়৷ 18 য়ৌন পাপ থেকে দূরে থাক৷ য়ে ব্যক্তি পাপকার্য় করে তা তার দেহের বাইরে করে, কিন্তু য়ে য়ৌন পাপ করে সে তার দেহের বিরুদ্ধেই পাপ করে৷ 19 তোমরা কি জান না, তোমাদের দেহ পবিত্র আত্মার মন্দির, তিনি তোমাদের মধ্যে বাস করেন, য়াঁকে তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে পেয়েছ? তোমরা তো আর নিজেদের নও৷ 20 কারণ তোমাদের মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছে; তাই তোমাদের দেহের দ্বারা ঈশ্বরের গৌরব কর৷
1 তোমরা য়ে সব বিষয়ে লিখেছ সে সম্বন্ধে এখন আলোচনা করব৷ একজন পুরুষের বিয়ে না করাই ভাল৷ 2 কোন পুরুষের কোন স্ত্রীলোকের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক না থাকাই ভাল৷ কিন্তু য়ৌন পাপের বিপদ আছে, তাই প্রত্যেক পুরুষের নিজ স্ত্রী থাকাই উচিত, আবার প্রত্যেক স্ত্রীলোকের নিজ স্বামী থাকা উচিত৷ 3 স্ত্রী হিসাবে তার যা যা বাসনা স্বামী য়েন অবশ্যই তাকে তা দেয়; ঠিক তেমনি স্বামীর সব বাসনাও য়েন স্ত্রী পূর্ণ করে৷ 4 স্ত্রী নিজ দেহের ওপর দাবী করতে পারে না, কিন্তু তার স্বামী পারে৷ ঠিক সেই রকম স্বামীরও নিজ দেহের ওপর দাবী নেই, কিন্তু তার স্ত্রীর আছে৷ 5 স্বামী, স্ত্রী তোমরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হতে আপত্তি করো না, কেবল প্রার্থনা করার জন্য উভয়ে পরামর্শ করে অল্প সময়ের জন্য আলাদা থাকতে পার, পরে আবার একসঙ্গে মিলিত হযো য়েন তোমাদের অসংযমতার জন্য শয়তান তোমাদের প্রলোভনে ফেলতে না পারে৷ 6 আমি এসব কথা হুকুম করার ভাব নিয়ে বলছি না, কিন্তু অনুমতি দিচ্ছি৷ 7 আমার ইচ্ছা সবাই য়েন আমার মতো হয়, কিন্তু প্রত্যেকে ঈশ্বরের কাছ থেকে ভিন্ন ভিন্ন বরদান পেয়েছে, একজন এক রকম, আবার অন্যজন অন্য রকম৷ 8 অবিবাহিত আর বিধবাদের সম্পর্কে আমার বক্তব্য, ‘তারা যদি আমার মতো অবিবাহিত থাকতে পারে তবে তাদের পক্ষে তা মঙ্গল৷ 9 কিন্তু যদি তারা নিজেদের সংযত রাখতে না পারে তবে বিয়ে করুক, কারণ কামের জ্বালায় জ্বলে পুড়ে মরার চেয়ে বরং বিয়ে করা অনেক ভাল৷’ 10 এখন যারা বিবাহিত তাদের আমি এই আদেশ দিচ্ছি৷ অবশ্য আমি দিচ্ছি না, এ আদেশ প্রভুরই - কোন স্ত্রী য়েন তার স্বামীকে পরিত্যাগ না করে৷ 11 যদি সে স্বামীকে ছেড়ে যায় তবে তার একা থাকা উচিত অথবা সে য়েন তার স্বামীর কাছে ফিরে যায়৷ স্বামীর উচিত নয় স্ত্রীকে পরিত্যাগ করা৷ 12 এখন আমি অন্য সমস্ত লোকদের বলি, আমি বলছি, প্রভু নয়৷ যদি কোন খ্রীষ্টানুসারী ভাইয়ের অবিশ্বাসী স্ত্রী থাকে আর সেই স্ত্রী তার সঙ্গে থাকতে রাজী থাকে, তবে সেই স্বামী য়েন তাকে পরিত্যাগ না করে৷ 13 আবার যদি কোন খ্রীষ্টানুসারী স্ত্রীলোকের অবিশ্বাসী স্বামী থাকে আর সেই স্বামী তার সঙ্গে থাকতে রাজী থাকে তবে সেই স্ত্রী য়েন তার স্বামীকে ত্যাগ না করে৷ 14 কারণ বিশ্বাসী স্ত্রীর মধ্য দিয়ে সেই অবিশ্বাসী স্বামী আর বিশ্বাসী স্বামীর মধ্য দিয়ে সেই অবিশ্বাসী স্ত্রী পবিত্রতা লাভ করে৷ তা না হলে তোমাদের ছেলে মেয়েরা অশুচি হত, কিন্তু এখন তারা পবিত্র৷ 15 যাই হোক যদি অবিশ্বাসী বিশ্বাসীকে ছেড়ে য়েতে চায় তবে তাকে তা করতে দাও৷ তখন ভাই বা বোন বাধ্যবাধকতার জন্য আটকে থাকবে না৷ ঈশ্বর আমাদের শান্তিময় জীবনযাপনের জন্যই আহ্বান করেছেন৷ 16 বিশ্বাসী স্ত্রী, তুমি হয়তো তোমার স্বামীকে উদ্ধারের পথ করে দেবে এবং বিশ্বাসী স্বামী তুমি এইবাবে হয়তো তোমার স্ত্রীর উদ্ধারের কারণ হয়ে উঠবে৷ 17 প্রভু যাকে য়ে দাযিত্ব দিয়েছেন, আর ঈশ্বর যাকে য়েমন আহ্বান করেছেন, সে সেইভাবে জীবনযাপন করুক৷ এই আদেশ আমি সব মণ্ডলীতে দিচ্ছি৷ 18 কাউকে কি সুন্নত হওয়া অবস্থায় আহ্বান করা হয়েছে? সে য়েন সুন্নতকে বাতিল না করে৷ কাউকে কি অসুন্নত অবস্থায় আহ্বান করা হয়েছে? তার সুন্নত হওয়ার প্রযোজন নেই৷ 19 সুন্নত হোক বা না হোক, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, ঈশ্বরের আদেশ পালনই হল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ 20 ঈশ্বর যাকে য়ে অবস্থায় আহ্বান করেছেন, সে সেই অবস্থাতেই থাকুক৷ 21 যখন তোমাকে আহ্বান করা হয়েছিল, তখন কি তুমি দাস ছিলে? এই অবস্থায় তোমার য়েন দুঃখ না হয়; কিন্তু তুমি যদি স্বাধীন হতে পার, তবে তার সুয়োগ গ্রহণ কর৷ 22 দাস অবস্থায় প্রভু যাকে আহ্বান করেছেন, সে প্রভুর স্বাধীন লোক৷ য়ে স্বাধীন অবস্থায় খ্রীষ্টের ডাক শুনেছে, সে প্রভুর দাসে পরিণত হয়েছে৷ 23 মূল্য দিয়ে তোমাদের কেনা হয়েছে৷ তোমরা সামান্য মানুষের দাসত্ব করো না৷ 24 ভাই ও বোনেরা, ঈশ্বরের কাছ থেকে নতুন জীবন পাবার সময় তোমরা য়ে য়েমন অবস্থায় ছিলে এখন সেই অবস্থাতেই ঈশ্বরের সঙ্গে থাক৷ 25 এখন কুমারী মেয়েদের প্রসঙ্গে আসি৷ তাদের সম্বন্ধে প্রভুর কাছ থেকে আমি কোন আদেশ পাই নি৷ তবে এ বিষয়ে আমার নিজস্ব মত প্রকাশ করছি৷ ঈশ্বরের কাছে আমি দয়া পেয়েছি, এই জন্য তোমরা আমার ওপর নির্ভর করতে পার৷ 26 আমি মনে করি, বর্তমানে এই সঙ্কটময় সময়ে কোন ব্যক্তির পক্ষে সে য়েমন আছে তেমনি থাকাই ভাল৷ 27 তুমি কি কোন স্ত্রীলোকের সঙ্গে বিবাহিত? তবে তাকে ত্যাগ করার চেষ্টা করো না৷ তুমি কি কোন স্ত্রীলোক থেকে মুক্ত আছ? তাহলে স্ত্রী পেতে চেযো না৷ 28 কিন্তু তুমি যদি বিয়ে কর তাতে তোমার কোন পাপ হয় না; আর কোন কুমারী যদি বিয়ে করে তাহলে সে পাপ করে না৷ কিন্তু এমন লোকদের জীবনে সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে৷ এই কষ্ট এড়াতে আমি তোমাদের সাহায্য করতে চাই৷ 29 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের য়ে কথা বলতে চাইছি, সময় খুব বেশী নেই তাই যাদের স্ত্রী আছে প্রভুর সেবার জন্য এখন থেকে তারা এমনভাবে চলুক য়েন তাদের স্ত্রী নেই; 30 আর যারা দুঃখ করছে, তারা এমনভাবে চলুক য়েন দুঃখ করছে না, যারা আনন্দিত তারা এমনভাবে চলুক য়েন আনন্দ করছে না৷ যারা কেনাকাটা করছে, তারা এমনভাবে করুক য়েন যা কিনেছে তা তাদের নিজেদের নয়৷ 31 যারা সংসারে বিষয় বস্তু ব্যবহার করে, তারা য়েন পুর্নমাত্রায় তাতে আসক্ত না হয়, কারণ এই সংসারের বর্তমান কাঠামো লুপ্ত হচ্ছে৷ 32 আমি চাই য়েন তোমরা দুর্ভাবনা থেকে মুক্ত হও৷ একজন অবিবাহিত লোক প্রভুর কাজের বিষয়ে বেশী করে চিন্তা করতে পারে, কিভাবে সে প্রভুকে সন্তুষ্ট করবে সেটাই তার চিন্তা হয়৷ 33 কিন্তু য়ে বিবাহিত সে এই সংসারের বিষয় চিন্তা করে, কিভাবে সে তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করবে, সেই হয় তার চিন্তা৷ 34 সে প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে চায় আবার সেই সঙ্গে তার স্ত্রীকে খুশী করতে চায়, এইভাবে দুই দিকেই তার চিন্তা হয়৷ একজন অবিবাহিতা বা কুমারী মেয়ে প্রভুর বিষয় চিন্তা করে, য়েন সে দেহে ও আত্মায় পবিত্র হয়৷ কিন্তু বিবাহিতা স্ত্রীলোক তার সংসারের প্রতি বেশী চিন্তা করে, আর তার চিন্তা থাকে কিভাবে সে তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করবে৷ 35 আমি তোমাদের ভালোর জন্যই একথা বলছি, তোমাদের ওপর কোন বিধি-নিষেধ চাপিয়ে দেবার জন্য নয়, বরং তোমরা যাতে ঠিক পথে চল আর যাতে তোমরা নানা বিষয়ে জড়িয়ে না পড়ো এবং সম্পূর্ণ সমর্পণ দ্বারা প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেদের উত্সর্গ কর সেইজন্যই বলছি৷ 36 কেউ যদি মনে করে য়ে সে তার কুমারী বাগদত্তার প্রতি সঙ্গত আচরণ করছে না, তার বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে, সে যদি মনে করে য়ে বিষয়টা শিগ্গির হওয়াই ভাল তবে সে যা চায় তাই করুক৷ এতে সে পাপ করছে না, তার বিয়ে হোক৷ 37 কিন্তু য়ে তার নিজের মনে দৃঢ়, যার কোন চাপ নেই, য়ে তার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আর তার মনে ঠিক করে য়ে সে তার বাগদত্তাকে বিয়ে না করেই নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম, তবে সে ভালই করবে৷ 38 তাই তার বাগদত্তা বন্ধুকে বিয়ে করে সে ঠিক কাজই করে; আর য়ে তাকে বিয়ে না করে সে আরো ভালো করে৷ 39 স্বামী যতদিন বেঁচে থাকে স্ত্রী ততদিনই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকে, কিন্তু স্বামী মারা গেলে সে মুক্ত, সে তখন যাকে ইচ্ছা আবার বিয়ে করতে পারে, অবশ্য সেই লোক য়েন প্রভুর হয়৷ 40 তবে আমার মতে সে যদি আর বিয়ে না করে তবে আরো সুখী হবে৷ এই আমার মত আর আমি মনে করি আমারও ঈশ্বরের আত্মা আছে৷
1 এখন প্রতিমার সামনে উত্সর্গ করা খাবারের বিষয়ে বলছি: আমরা জানি য়ে, ‘আমাদের সবার জ্ঞান আছে৷’ ‘জ্ঞান’ মানুষকে আত্মগর্বে ফাঁপিয়ে তোলে; কিন্তু ভালোবাসা অপরকে গড়ে তোলে৷ 2 যদি কেউ মনে করে সে কিছু জানে, তবে তার যা জানা উচিত ছিল এখনও সে তা জানে না৷ 3 কিন্তু কেউ যদি ঈশ্বরকে ভালবাসে, তবে ঈশ্বর তাকে জানেন৷ 4 প্রতিমার কাছে উত্সর্গ করা খাদ্যবস্তুর বিষয়ে বলি, আমরা জানি এই জগতে প্রতিমা আসলে কিছুই নয়, এবং ঈশ্বর মাত্র একজনই৷ 5 স্বর্গে হোক্ বা পৃথিবীতে হোক্, লোকে যাদের দেবতা বলে সেইরকম বহু ‘দেবতারা’ বহু ‘প্রভুরা’ থাকলেও 6 কিন্তু আমাদের জন্য একমাত্র ঈশ্বর আছেন; তিনি আমাদের পিতা, তাঁর থেকেই সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে, আমরা তাঁর জন্যই বেঁচে আছি৷ একমাত্র প্রভু আছেন, তিনি যীশু খ্রীষ্ট, তাঁর মাধ্যমেই সব কিছু সৃষ্ট, তাঁর মাধ্যমেই আমরা বেঁচে আছি৷ 7 কিন্তু সকলের এ জ্ঞান নেই৷ কিছু লোক এখনও প্রতিমার সংশ্রবে থাকায় প্রতিমার কাছে উত্সর্গ করা খাদ্য বস্তুকে প্রসাদ জ্ঞানে খায়, আর তাদের বিবেক দুর্বল হওয়াতে দোষী প্রতিপন্ন হয়৷ 8 কিন্তু খাদ্যবস্তু আমাদের ঈশ্বরের কাছে নিয়ে আসে না৷ ঐ সব যদি আমরা না খাই তাহলে আমাদের কোন ক্ষতি হয় না; আর যদি খাই তাহলেও কোন লাভ হয় না৷ 9 কিন্তু সাবধান, তোমাদের এই স্বাধীনতা য়েন দুর্বল এমন লোকদের পাপের কারণ না হয়৷ 10 তুমি জান য়ে প্রতিমা কিছুই নয়, বেশ; কিন্তু দুর্বল চিত্তের কেউ যদি তোমাকে মন্দিরে বসে খেতে দেখে তবে সে দুর্বল চিত্তের বলে তার বিবেক কি তাকে প্রতিমার কাছে উত্সর্গ করা বলির মাংস খেতে সাহস য়োগাবে না? যদিও সে বিশ্বাস করে এটা ঠিক নয়৷ 11 এইভাবে তোমার এই জ্ঞানের দ্বারা সেই দুর্বল চিত্তের ভাই, যার জন্য খ্রীষ্ট মরেছেন, সে ধ্বংস হয়৷ 12 তাই এইভাবে বিশ্বাসী ভাইদের বিরুদ্ধে পাপ করলে ও তাদের দুর্বল বিবেকে আঘাত করলে, তোমরা খ্রীষ্টের বিরুদ্ধেই পাপ কর৷ 13 সেইজন্য কোন খাদ্য খাওয়াতে যদি আমার ভাই পাপে পড়ে, তবে আমি কখনও তা খাব না৷ আমি মাংস খাওয়া ছেড়ে দেব য়েন আমি আমার ভাইয়ের পাপের কারণ না হই৷
1 আমি কি স্বাধীন মানুষ নই? আমি কি একজন প্রেরিত নই? আমাদের প্রভু যীশুকে কি আমি দেখিনি? তোমরাই কি প্রভুতে আমার কাজের বল নও? 2 অন্যরা আমাকে যদি প্রেরিত বলে গ্রহণ নাও করে, তবূ তোমরা নিশ্চয় আমাকে প্রেরিত বলে মেনে নেবে৷ প্রভুতে আমি য়ে প্রেরিত তোমরাই তো তার প্রমাণ৷ 3 কিছু লোক যারা আমার দোষগুণ বিচার করে, তাদের কাছে আমার উত্তর এই; 4 আমাদের কি ভোজন পান করার অধিকার নেই? 5 অন্যান্য প্রেরিতেরা, প্রভুর আপন ভাইয়েরা ও কৈফা য়েমন করেন তেমনভাবে আমাদের কি কোন বিশ্বাসীকে স্ত্রী হিসাবে সঙ্গে নিয়ে যাবার অধিকার নেই? 6 বার্ণবা ও আমাকেই কি কেবল জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করতে হবে? 7 কোন সৈনিক কি তার নিজের খরচে সৈন্যদলে থাকে? য়ে দ্রাক্ষা ক্ষেত প্রস্তুত করে সে কি তার ফল খায় না? য়ে মেষপাল চরায় সে কি মেষদের দুধ পান করে না? 8 আমি এসব মানুষের বিচার বুদ্ধির ওপর নির্ভর করে বলছি না৷ ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থায় কি একই কথা বলে না? 9 কারণ মোশির বিধি-ব্যবস্থায় আছে, ‘য়ে বলদ শস্য মাড়ে তার মুখে জালতি বেঁধো না৷’ঈশ্বর কি কেবল বলদের কথা ভেবেই একথা বলেছেন? 10 তা নয়, কিন্তু আমাদের কথা চিন্তা করেই তিনি এসব কথা বলেছেন, শাস্ত্রে আমাদের জন্যই এসব লেখা হয়েছে, কারণ য়ে চাষ করে, সে ফসল পাবার প্রত্যাশাতেই তা করে; আর য়ে শস্য মাড়াই করে, সে মাড়াই করা শস্য থেকে কিছু পাবার প্রত্যাশাতেই তা করে৷ 11 আমরা তোমাদের মাঝে আত্মিক বীজ বুনেছি, য়েন এখন ফসল হিসাবে যদি তোমাদের কাছ থেকে পার্থিব কোন কিছু পাই, তবে তা কি খুব বেশী কিছু পাওয়া হবে? 12 এই ব্যাপারে তোমাদের কাছ থেকে অন্যেরা যখন দাবী করে, তখন তা পাবার জন্য আমাদের নিশ্চয় আরও বেশী অধিকার আছে৷ আমরা তোমাদের ওপর এই অধিকার খাটাই না৷ আমরা বরং সকলই সহ্য করছি, পাছে খ্রীষ্টের সুসমাচার গ্রহণের পথে কোন বাধার সৃষ্টি হয়৷ 13 তোমরা তো জান, যারা মন্দিরে কাজ করে, তারা মন্দির থেকেই তাদের খাবার পায়৷ যারা যজ্ঞবেদীর ওপর নিয়মিত নৈবেদ্য উত্সর্গ করে, তারা তারই অংশ পায়৷ 14 তেমনি প্রভুও সুসমাচার প্রচারকদের জন্য এই বিধান দিয়েছেন, য়েন সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমেই তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়৷ 15 কিন্তু আমি এই অধিকার কখনও প্রযোগ করিনি৷ আমি তোমাদের কাছ থেকে ঐরকম সাহায্য নেবার জন্যও লিখছি না৷ এ বিষয়ে আমার য়ে গর্ব আছে, তা যদি কেউ কেড়ে নেয় তবে তার থেকে আমার মরণ ভাল৷ 16 তবে আমি সুসমাচার প্রচার করি বলে গর্ব করছি না৷ সুসমাচার প্রচার করা আমার কর্তব্য, এটি আমার অবশ্য করণীয়৷ আমি যদি সুসমাচার প্রচার না করি তবে তা আমার পক্ষে কত দুর্ভাগ্যের বিষয় হবে! 17 যদি নিজের ইচ্ছায় সুসমাচার প্রচার করতাম তবে আমি পুরস্কার পাবার য়োগ্য হতাম৷ কিন্তু দাযিত্ব হিসাবে আমার ওপর এই কাজ ন্যস্ত হয়েছে, 18 সেখানে আমি কি পুরস্কার পাব? এই আমার পুরস্কার; যখন আমি সুসমাচার প্রচার করি, তা বিনামূল্যে করি৷ এইভাবে সুসমাচার প্রচার করা কালীন আমার বেতন পাবার য়ে অধিকার আছে, তা আমি ব্যবহার করি না৷ 19 আমি স্বাধীন! আমি কারোর অধীনে নেই, তবু আমি সকলের দাস হলাম, যাতে অনেককে আমি খ্রীষ্টের জন্য লাভ করতে পারি৷ 20 ইহুদীদের জয় করার জন্য আমি ইহুদীদের কাছে ইহুদীদের মতো হলাম৷ যারা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবন কাটাচ্ছে, তাদের লাভ করার জন্য আমি নিজে বিধি-ব্যবস্থার অধীন না হলেও আমি তাদের মত হলাম৷ 21 আবার যারা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে নেই তাদেরকে জয় করার জন্য আমি তাদের মতো হলাম৷ অবশ্য এর মানে এই নয় য়ে আমি বিধি-ব্যবস্থা মানি না, আমি তো খ্রীষ্টের বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবনযাপন করছি৷ 22 যারা দুর্বল, তাদের কাছে আমি দুর্বল হলাম, য়েন তাদেরকে জয় করতে পারি৷ আমি সকলের কাছে তাদের মনের মত হলাম, যাতে সন্ভাব্য সকল উপায়ে তাদের বাঁচাতে পারি৷ 23 আমি এসব সুসমাচারের জন্যই করি, য়েন এর আশীর্বাদের সহভাগী হই৷ 24 তোমরা কি জান না, যখন দৌড় প্রতিয়োগিতা হয় তখন অনেকেই দৌড়ায়; কিন্তু কেবল একজনই বিজযী হয়ে পুরস্কার পায়৷ তাই এমনভাবে দৌড়োও য়েন পুরস্কার পাও! 25 আবার দেখ, য়ে সব প্রতিয়োগী খেলায় অংশগ্রহণ করে, তারা কঠিন নিয়ম পালন করে৷ তারা অস্থাযী বিজয় মুকুট পাবার জন্য তা করে; কিন্তু আমরা অক্ষয় মুকুটে ভূষিত হবার জন্য করি৷ 26 তাই সেইভাবে একটা লক্ষ্য নিয়ে আমি দৌড়োচ্ছি৷ শূন্যে মুষ্টাঘাত করছে, এমন লোকের মত আমি লড়াই করি না৷ 27 বরং আমি আমার দেহকে কঠোরতা ও সংযমের মধ্যে রেখেছি, য়েন অন্য লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার পর নিজে কোনভাবে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অয়োগ্য বলে বিবেচিত না হই৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা একথা জান য়ে আমাদের পিতৃপুরুষরা যখন মোশিকে অনুসরণ করেছিলেন তখন তাঁদের কি হয়েছিল৷ তাঁরা সকলে মেঘের নীচে ছিলেন, সকলেই সাগর পার হয়েছিলেন৷ 2 তাঁরা সকলে মোশির অনুগামী হয়ে মেঘে ও সমুদ্রে বাপ্তাইজ হয়েছিলেন৷ 3 তাঁরা সকলে একই ধরণের আত্মিক খাদ্য পেয়েছিলেন; 4 আর একই আত্মিক পানীয় পান করেছিলেন৷ তাঁরা এক আত্মিক শৈল থেকে সেই পানীয় পান করতেন যা তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল, সেই শৈলই হচ্ছেন খ্রীষ্ট৷ 5 কিন্তু তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ লোকের প্রতিই ঈশ্বর সন্তুষ্ট ছিলেন না, আর তারা পথে প্রান্তরের মধ্যে মারা পড়ল৷ 6 এসব ঘটনা আমাদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ ঘটল, যাতে তারা য়েমন মন্দ বিষয়ে অভিলাষ করেছিল আমরা তা না করি৷ 7 তাদের মধ্যে কিছু লোক য়েমন প্রতিমা পূজা শুরু করেছিল তেমন তোমরা প্রতিমা পূজা শুরু করো না৷ কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘লোকেরা ভোজন পান করতে বসল আর উঠে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করল৷’ 8 তাদের মধ্যে য়েমন কতক লোক য়ৌন পাপে পাপী হয়েছিল আর একদিনে তেইশ হাজার লোক তাদের পাপের জন্য মারা পড়েছিল, আমরা য়েন তেমনি য়ৌন পাপ না করি৷ 9 তাদের মধ্যে য়েমন কিছু লোক প্রভুর পরীক্ষা করে সাপের কামড়ে মারা পড়েছিল, আমরা য়েন তেমন পরীক্ষা না করি৷ 10 আবার তাদের মধ্যে কিছু লোক য়েমন অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আর ধ্বংসকারী স্বর্গদূতের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়েছিল, তোমরা তেমনি অসন্তোষ প্রকাশ করো না৷ 11 তাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছিল তা দৃষ্টান্তস্বরূপ রয়ে গেছে৷ আমাদের সাবধান করে দেবার জন্য এসব কথা লেখা হয়েছে, কারণ আমরা শেষ যুগে এসে পৌঁছেছি৷ 12 তাই য়ে মনে করে য়েন শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে, সে সাবধান হোক, পাছে পড়ে মারা যায়৷ 13 য়ে প্রলোভনগুলি স্বাভাবিকভাবে লোকদের কাছে আসে তার থেকে বেশী কিছু তোমাদের কাছে আসেনি৷ তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বস্ত থাক, য়ে সব প্রলোভন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তোমাদের নেই, তিনি তা তোমাদের জীবনে আসতে দেবেন না; কিন্তু প্রলোভনের সাথে সাথে তার থেকে উদ্ধারের পথ তিনিই করে দেবেন, য়েন তোমরা সহ্য করতে পার৷ 14 আমার প্রিয় বন্ধুরা, সব রকম প্রতিমা পূজা থেকে দূরে থাক৷ 15 আমি তোমাদের বুদ্ধিমান জেনে একথা বলছি৷ আমি যা বলি তা তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ৷ 16 আশীর্বাদের পানপাত্র, যা নিয়ে আমরা ধন্যবাদ দিই তা কি খ্রীষ্টের রক্তের সহভাগীতা নয়? য়ে রুটি ভেঙে টুকরো টুকরো করে খাওয়া হয়, তা কি খ্রীষ্টের দেহের সহভাগীতা নয়? 17 রুটি একটাই কিন্তু আমরা সকলেই সেই একটা রুটি থেকেই অংশ গ্রহণ করি৷ তাই আমরা অনেক হলেও আসলে আমরা এক দেহ৷ 18 ইস্রায়েল জাতির কথা চিন্তা কর৷ যারা বলির মাংস খায় তারা কি সেই যজ্ঞবেদীর নৈবেদ্যর সহভাগী হয় না? 19 তাহলে আমার কথার অর্থ কি হল? আমি কি এই কথা বলছি, য়ে প্রতিমার কাছে য়েসব ভোগ উত্সর্গ করা হয় তার কোন তাত্পর্য় আছে অথবা প্রতিমার কোন বাস্তবতা আছে? 20 কিন্তু আমার কথার অর্থ এই লোকেরা যা কিছু প্রতিমার উদ্দেশ্যে বলিদান করে, তারা তা ভূতদের উদ্দেশ্যেই করে, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নয়; আর আমি চাই না য়ে তোমাদের কোনভাবে ভুতদের সঙ্গে সংয়োগ থাকে৷ 21 তোমরা প্রভুর পানপাত্র ও ভুতদের পানপাত্র, উভয় থেকে পান করতে পার না৷ আবার তোমরা প্রভুর টেবিল ও ভুতদের টেবিল উভয় টেবিলে অংশ নিতে পার না৷ 22 তোমরা কি প্রভুকে ঈর্ষান্বিত করতে চাইছ? আমরা কি তাঁর থেকে শক্তিশালী? কখনই না৷ 23 ‘আমাদের সব কিছু করার স্বাধীনতা আছে৷’ তবে সব কিছুই য়ে মঙ্গলজনক তা নয়৷ ‘হ্যাঁ, য়ে কোন কিছু করার স্বাধীনতা আমাদের দেওয়া আছে৷’ তবে সব কিছুই য়ে গড়ে তোলে তা নয়৷ 24 কেউ য়েন স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা না করে; বরং প্রত্যেকে য়েন অপরের মঙ্গল চায়৷ 25 বিবেকের প্রশ্ন না তুলে য়ে কোন মাংস বাজারে বিক্রি হয় তা খাও৷ 26 কারণ শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে: ‘পৃথিবী ও তার মধ্যেকার সব কিছুই প্রভুর৷’ 27 যদি কোন অবিশ্বাসী ভাই তোমাকে নিমন্ত্রণ করে; আর যদি তুমি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে চাও, তবে নিজের বিবেকের কাছে কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে য়ে কোন খাদ্যদ্রব্য পরিবেশন করে সামনে রাখা হয়, তা খেও৷ 28 কিন্তু কেউ যদি বলে য়ে, ‘এ হল প্রতিমার প্রসাদ’ তবে য়ে জানালো, তার কথা চিন্তা করে ও বিবেকের কথা মনে রেখে, তা খেও না৷ 29 আমি কোন ব্যক্তির নিজের বিবেকের নয়, কিন্তু অপর ব্যক্তির বিবেকের বিষয় বলছি৷ আমার স্বাধীনতা কেন অপরের বিবেকের দ্বারা বিচারিত হবে? 30 যদি আমি ধন্যবাদ জানিয়ে খাই, তাহলে য়ে বিষয়ের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছি সে বিষয়ে আমার সমালোচনা হবে এ আমি চাই না৷ 31 তাই তোমরা আহার কর, কি পান কর বা যা কিছু কর, সব কিছুই ঈশ্বরের মহিমার জন্য কর৷ 32 কি ইহুদী, কি গ্রীক, কি ঈশ্বরের মণ্ডলী, কারো বিঘ্নের কারণ হযো না৷ 33 য়েমন আমি নিজের ভাল চাই না কিন্তু অপরের ভাল চাই, য়েন তারা উদ্ধার লাভ করে৷
1 আমি য়েমন খ্রীষ্টের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করি, তোমরাও তেমনি আমার দৃষ্টান্ত অনুসরণ কর৷ 2 আমি তোমাদের প্রশংসা করছি, কারণ তোমরা সব সময় আমার কথা স্মরণ করে থাক, আর তোমাদের আমি য়ে শিক্ষা দিয়েছি তা তোমরা বেশ ভালভাবে পালন করছ৷ 3 কিন্তু আমি চাই একথা তোমরা বোঝ য়ে প্রত্যেক পুরুষের মস্তক হচ্ছেন খ্রীষ্ট৷ স্ত্রীর মস্তক তার স্বামী, আর খ্রীষ্টের মস্তক হলেন ঈশ্বর৷ 4 যদি কোন পুরুষ তার মাথা ঢেকে রেখে প্রার্থনা করে অথবা ভাববাণী বলে তবে সে তার মাথার অসম্মান করে৷ 5 কিন্তু য়ে স্ত্রীলোক মাথা না ঢেকে প্রার্থনা করে বা ভাববানী বলে, সে তার নিজের মাথার অপমান করে, সে মাথা মোড়ানো স্ত্রীলোকের মত হয়ে পড়ে৷ 6 স্ত্রীলোক যদি তার মাথা না ঢাকে তবে তার চুল কেটে ফেলাই উচিত৷ কিন্তু চুল কেটে ফেলা বা মাথা নেড়া করা যদি স্ত্রীলোকের পক্ষে লজ্জার বিষয় হয়, তবে সে তার মাথা ঢেকে রাখুক৷ 7 আবার পুরুষ মানুষের মাথা ঢেকে রাখা উচিত নয়, কারণ সে ঈশ্বরের স্বরূপ ও মহিমা প্রতিফলন করে৷ কিন্তু স্ত্রীলোক হল পুরুষের মহিমা৷ 8 কারণ স্ত্রীলোক থেকে পুরুষের সৃষ্টি হয় নি; কিন্তু পুরুষ থেকেই স্ত্রীলোক এসেছে৷ 9 স্ত্রীলোকের জন্য পুরুষের সৃষ্টি হয় নি, কিন্তু পুরুষের জন্য স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হয়েছিল৷ 10 এই কারণে এবং স্বর্গদূতগণের জন্য অধীনতার চিহ্ন হিসাবে একজন স্ত্রীলোক তার মাথা ঢেকে রাখবে৷ 11 যাই হোক্ প্রভুতে স্ত্রীলোক ছাড়া পুরুষ নয়, এবং পুরুষ ছাড়া স্ত্রীলোক নয়৷ 12 য়েমন পুরুষ থেকে স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হল, তেমন আবার পুরুষের জন্ম স্ত্রীলোক থেকে হল, বাস্তবে এ সবকিছুই ঈশ্বর থেকে হয়৷ 13 তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ, মাথা না ঢেকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা কি স্ত্রীলোকের শোভা পায়? 14 স্বাভাবিক বিবেচনাও বলে য়ে পুরুষ মানুষ যদি লম্বা চুল রাখে তবে তার সম্মান থাকে না৷ 15 কিন্তু স্ত্রীলোকের লম্বা চুল তার গৌরবের বিষয় কারণ সেই লম্বা চুল তার মাথা ঢেকে রাখার জন্য তাকে দেওয়া হয়েছে৷ 16 কেউ কেউ হয়তো এ নিয়ে তর্ক করতে চাইবে, কিন্তু আমরা ও ঈশ্বরের সকল মণ্ডলী, এই প্রথা মেনে চলি না৷ 17 কিন্তু এখন আমি য়ে বিষয়ে তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি সেই বিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করতে পারি না, কারণ তোমরা যখন একত্রিত হও তাতে ভাল না হয়ে শুনছি তোমাদের ক্ষতি হচ্ছে৷ 18 প্রথমতঃ আমি শুনেছি য়ে তোমরা যখন মণ্ডলীতে সমবেত হও, তখন তোমাদের মধ্যে অনেক দল থাকে, আর আমি এই ব্যাপারে কিছুটা বিশ্বাস করি৷ 19 তোমাদের মধ্যে ভিন্নতা অবশ্যই থাকবে, যাতে তোমাদের মধ্যে যারা যথার্থ খাঁটি তারা স্পষ্ট হয়৷ 20 তাই যখন তোমরা সমবেত হও, তখন তোমরা প্রকৃতপক্ষে প্রভুর ভোজ খাও না৷ 21 কারণ খাবার সময় প্রত্যেকে নিজের নিজের খাবার আগে খেয়ে নেয়, তাতে কেউ বা ক্ষুধার্ত থাকে; আর কেউ কেউ অতিরিক্ত পানাহার করে বেহুঁস হয়ে যায়৷ 22 পানাহার করার জন্য তোমাদের কি নিজেদের বাড়ীঘর নেই? তোমরা কি ঈশ্বরের মণ্ডলীকে তুচ্ছ জ্ঞান কর; আর যাদের কিছু নেই তাদের কি লজ্জায় ফেলতে চাও? আমি তোমাদের কি বলব? এমন কাজ করার জন্য আমি কি তোমাদের প্রশংসা করব? এবিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করব না৷ 23 আমি প্রভুর কাছ থেকে য়ে শিক্ষা পেয়েছি তোমাদের তা দিয়েছি৷ য়ে রাত্রে প্রভু যীশুকে হত্যার জন্য শত্রুর হাতে সঁপে দেওয়া হয়, সেই রাত্রে তিনি একটি রুটি নিয়ে, 24 ধন্যবাদ দিলেন ও তা ভেঙ্গে বললেন, ‘এ আমার দেহ; এ তোমাদের জন্য, আমার স্মরণে এটি করো৷’ 25 খাওয়া শেষ হলে, সেইভাবে তিনি পানপাত্র তুলে নিয়ে বললেন, ‘এই পানপাত্র হল আমার রক্তে স্থাপিত নতুন চুক্তি৷ তোমরা যতবার এই পানপাত্র থেকে পান করবে আমার স্মরণে তো করো৷’ 26 কারণ তোমরা যতবার এই রুটি খাবে ও এই পানপাত্রে পান করবে, ততবার তোমরা প্রভুর মৃত্যুর কথাই প্রচার করতে থাকবে, যতদিন পর্যন্ত না তিনি ফিরে আসেন৷ 27 তাই য়ে কেউ অয়োগ্যভাবে প্রভুর এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে প্রভুর দেহের ও রক্তের জন্য দাযী হবে৷ 28 এই রুটি খাওয়ার ও সেই পানপাত্রে পান করার আগে প্রত্যেকের উচিত নিজের হৃদয় পরীক্ষা করা৷ 29 কারণ য়ে অয়োগ্যভাবে এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে যদি দেহের অর্থ কি তা না বোঝে তবে সেই খাদ্য পানীয় ঈশ্বরের বিচারদণ্ডেই পরিণত হয়৷ 30 সেই জন্য তোমাদের মধ্যে অনেকে আজ দুর্বল ও অসুস্থ, অনেকে মারাও পড়েছে৷ 31 কিন্তু যদি নিজেদের ঠিক মতো পরীক্ষা করতাম, তাহলে ঈশ্বরকে আমাদের বিচার করতে হত না৷ 32 কিন্তু যখন প্রভু আমাদের বিচার করেন, তিনি আমাদের শাসনও করেন, যাতে আমরা জগতের জন্য লোকদের সঙ্গে বিচারপ্রাপ্ত না হই৷ 33 তাই, আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন খাওয়া-দাওয়া করার জন্য সমবেত হও, তখন একজন অন্য জনের জন্য অপেক্ষা করো৷ 34 যদি কারোর খিদে পায়, তবে সে তার বাড়িতে খেয়ে নিক্৷ এইভাবে চল য়েন তোমরা একত্রিত হলে তোমাদের ওপর ঈশ্বরের দণ্ডাজ্ঞা না আসে; আর আমি যখন যাব তখন অন্য বিষয়গুলির সমাধান করব৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা সঠিকভাবে এগুলি বুঝে নাও৷ 2 তোমরা জান, যখন তোমরা অবিশ্বাসী ছিলে, তখন তোমরা বোবা প্রতিমাগুলির দিকেই পরিচালিত হতে৷ 3 তাই আমি তোমাদের বলছি য়ে, ঈশ্বরের আত্মার প্রেরণায় কেউ কথা বললে সে কখনও, ‘যীশু অভিশপ্ত’ একথা বলতে পারে না৷ আবার পবিত্র আত্মার প্রেরণা ছাড়া কেউ বলতে পারে না য়ে, ‘যীশুই প্রভু৷’ 4 আবার নানা প্রকার আত্মিক বরদান আছে, কিন্তু সেই একমাত্র পবিত্র আত্মাই এইসব বরদান দিয়ে থাকেন৷ 5 নানা প্রকার সেবার কাজও আছে, কিন্তু আমরা সকলে একই প্রভুর সেবা করি৷ 6 কর্ম সাধনের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, কিন্তু সেই একই ঈশ্বর সব রকম কাজ সকল মানুষের মধ্যে করান৷ 7 মঙ্গলের জন্য প্রত্যেকের কাছে আত্মার দান প্রকাশ করা হয়েছে৷ 8 সেই আত্মার দ্বারা একজনকে প্রজ্ঞার বাণী বলার ক্ষমতা দেওয়া হয়, অন্যজনকে জ্ঞানের বাণী বলার ক্ষমতা দেওয়া হয়৷ 9 আবার একজনকে সেই একই আত্মার দ্বারা বিশ্বাস দেওয়া হয়, অন্যজনকে রোগীদের সুস্থ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়৷ 10 আবার কাউকে অলৌকিক কাজ করার পরাক্রম, ভাববানী বলার ক্ষমতা, বিভিন্ন আত্মাকে চিনে নেবার ক্ষমতা, বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা বা সেই সব ভাষার তর্জমা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়৷ 11 কিন্তু এইসব কাজ সেই এক আত্মাই সম্পন্ন করেন এবং কাকে কি ক্ষমতা দেবেন তা তিনিই স্থির করেন৷ 12 আমাদের প্রত্যেকের দেহ নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে গঠিত৷ যদিও অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তবু তারা মিলে হয় একটি দেহ; খ্রীষ্টও ঠিক সেই রকম৷ 13 আমাদের মধ্যে কেউ ইহুদী, কেউ অইহুদী, কেউ দাস, আবার কেউ স্বাধীন, কিন্তু আমরা সকলেই দেহেতে এক হওয়ার জন্য এক আত্মার দ্বারা বাপ্তাইজ হয়েছি৷ আর আমাদের সকলকেই পান করার জন্য একই আত্মা দেওয়া হয়েছে৷ 14 একজনের দেহের মধ্যে একের অধিক অঙ্গ আছে৷ 15 পা যদি বলে, ‘আমি তো হাত নই; তাই আমি দেহের অঙ্গ নই,’ তবে কি তা দেহের অঙ্গ হবে না? 16 কান যদি বলে, ‘আমি তো চোখ নই, তাই আমি দেহের অঙ্গ নই,’ তবে কি তা দেহের অঙ্গ হবে না? 17 সমস্ত দেহটাই যদি চোখ হত তবে কান কোথায় থাকত? আর সমস্ত দেহটাই যদি কান হত তবে নাক কোথায় থাকত? 18 কিন্তু ঈশ্বর য়েমনটি চেয়েছেন সেইভাবে দেহের সমস্ত অংশগুলিকে সাজিয়েছেন৷ তা না হয়ে সব অঙ্গগুলি যদি একরকম হত তবে দেহ বলে কি কিছু থাকত? 19 20 কিন্তু এখন অঙ্গ অনেক বটে, কিন্তু দেহ এক৷ 21 চোখ কখনও হাতকে বলতে পারে না য়ে, ‘তোমাকে আমার কোন দরকার নেই৷’ আবার মাথাও পা দুটিকে বলতে পারে না য়ে, ‘তোমাদের আমার কোন প্রযোজন নেই৷’ 22 বরং দেহের সেই অংশগুলি, যাদের দুর্বল মনে হয় তাদের প্রযোজন খুবই বেশী৷ 23 য়ে অঙ্গগুলির প্রতি আমরা যত্নবান নই, তাদের বেশী যত্ন নিতে হবে৷ আমাদের য়ে সব অঙ্গ প্রদর্শনের অয়োগ্য সেগুলিকেই বেশী করে শালীনতায় ভূষিত করা হয়৷ 24 আমাদের য়ে সব অঙ্গ সুশ্রী, সেগুলির জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রযোজন হয় না৷ ঈশ্বর দেহকে এমনভাবে গঠন করেছেন য়েন য়ে অঙ্গের মর্য়াদা নেই সে অধিক মর্য়াদা পায়, 25 য়েন দেহের মধ্যে কোন বিভেদ সৃষ্টি না হয়, কিন্তু দেহের প্রতিটি অঙ্গই য়েন পরস্পরের জন্য সমানভাবে চিন্তা করে৷ 26 দেহের কোন একটি অঙ্গ যদি কষ্ট পায়, তবে তার সাথে সবাই কষ্ট করে আর একটি অঙ্গ যদি মর্য়াদা পায়, তাহলে তার সঙ্গে অপর সকল অঙ্গ ও খুশী হয়৷ 27 ঠিক সেই রকম, তোমরাও খ্রীষ্টের দেহ, আর এক এক জন এক একটি অঙ্গ৷ 28 ঈশ্বর মণ্ডলীতে প্রথমতঃ প্রেরিতদের, দ্বিতীয়তঃ ভাববাদীদের, তৃতীয়তঃ শিক্ষকদের রেখেছেন৷ এরপর নানা প্রকার অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা, রোগীদের আরোগ্য দান করার ক্ষমতা, উপকার করার ক্ষমতা, নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা ও বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছেন৷ 29 সকলেই কি প্রেরিত? সকলেই কি ভাববাদী? সকলেই কি শিক্ষক? সকলেই কি অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা পেয়েছে? 30 সকলেই কি রোগীকে আরোগ্য দান করার ক্ষমতা পেয়েছে? না৷ সকলেই কি বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা পেয়েছে? বা সকলেই কি বিভিন্ন ভাষায় তর্জমা করার ক্ষমতা পেয়েছে? না৷ 31 কিন্তু তোমরা আত্মার শ্রেষ্ঠ বরদানগুলি পাবার জন্য বাসনা কর৷
1 আর এখন আমি তোমাদের এসবের থেকে আরো উত্কৃষ্ট একটা পথ দেখাব৷ আমি যদি বিভিন্ন মানুষের ভাষা এমনকি স্বর্গদূতদের ভাষাও বলি কিন্তু আমার মধ্যে যদি ভালবাসা না থাকে, তবে আমি জোরে বাজানো ঘন্টা বা ঝনঝন করা করতালের আওয়াজের মতো৷ 2 আমি যদি ভাববাণী বলার ক্ষমতা পাই, ঈশ্বরের সব নিগূঢ়তত্ত্ব ভালভাবে বুঝি এবং সব ঐশ্বরিক জ্ঞান লাভ করি, আমার যদি এমন বড় বিশ্বাস থাকে যার শক্তিতে আমি পাহাড় পর্যন্ত টলাতে পারি, অথচ আমার মধ্যে যদি ভালবাসা না থাকে তবে এসব থাকা সত্ত্বেও আমি কিছুই নয়৷ 3 আমি যদি আমার যথা সর্বস্ব দিয়ে দরিদ্রদের মুখে অন্ন য়োগাই, যদি আমার দেহকে আহুতি দেবার জন্য আগুনে সঁপে দিই, 4 কিন্তু যদি আমার মধ্যে ভালবাসা না থাকে, তাহলে আমার কিছুই লাভ নেই৷ ভালবাসা ধৈর্য় ধরে, ভালবাসা দয়া করে, ভালবাসা ঈর্ষা করে না, অহঙ্কার বা গর্ব করে না৷ 5 ভালবাসা কোন অভদ্র আচরণ করে না৷ ভালবাসা স্বার্থ-সিদ্ধির চেষ্টা করে না, কখনও রেগে ওঠে না, অপরের অন্যায় আচরণ মনে রাখে না৷ 6 ভালবাসা কোন মন্দ বিষয় নিয়ে আনন্দ করে না, কিন্তু সত্যে আনন্দ করে৷ 7 ভালবাসা সব কিছুই সহ্য করে, সব কিছু বিশ্বাস করে, সব কিছুতেই প্রত্যাশা রাখে, সবই ধৈর্য়ের সঙ্গে গ্রহণ করে৷ 8 ভালবাসার কোন শেষ নেই৷ কিন্তু ভাববাণী বলার ক্ষমতা যদি থাকে তো লোপ পাবে৷ যদি অপরের ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা থাকে, তবে তাও একদিন শেষ হবে৷ যদি জ্ঞান থাকে, তবে তাও একদিন লোপ পাবে৷ 9 এসব কিছুর পরিসমাপ্তি ঘটবে কারণ আমাদের য়ে জ্ঞান ও ভাববাণী বলার ক্ষমতা তা অসম্পূর্ণ৷ 10 কিন্তু যখন সম্পূর্ণ সিদ্ধ বিষয় আসবে, তখন যা অসম্পূর্ণ ও সীমিত সে সব লোপ পেয়ে যাবে৷ 11 আমি যখন শিশু ছিলাম, তখন শিশুর মতো কথা বলতাম, শিশুর মতোই চিন্তা করতাম, ও শিশুর মতোই বিচার করতাম৷ এখন আমি পরিণত মানুষ হয়েছি, তাই শৈশবের বিষয়গুলি ত্যাগ করেছি৷ 12 এখন আমরা আয়নায় আবছা দেখছি; কিন্তু সেই সময় সরাসরি পরিষ্কার দেখব৷ এখন আমার জ্ঞান সীমিত, কিন্তু তখন আমি সম্পূর্ণভাবে জানতে পারব, ঠিক য়েমন ঈশ্বর এখন আমাকে সম্পূর্ণভাবে জানেন৷ 13 এখন এই তিনটি বিষয় আছে: বিশ্বাস, প্রত্যাশা ও ভালবাসা; আর এদের মধ্যে ভালবাসাই শ্রেষ্ঠ৷
1 তোমরা ভালবাসার জন্য চেষ্টা কর এবং অন্য আত্মিক বরদানগুলি লাভ করার জন্য একান্তভাবে চেষ্টা কর৷ বিশেষ করে য়ে বরদান পাবার জন্য তোমাদের চেষ্টা করা উচিত, তো হল ভাববাণী বলতে পারা৷ 2 য়ে ব্যক্তি বিশেষ ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা পেয়েছে, সে কোন মানুষের সঙ্গে নয় ঈশ্বরের সঙ্গেই কথা বলে, কারণ সে কি বলে তা কেউ বুঝতে পারে না, বরং সে আত্মার মাধ্যমে নিগূঢ় তত্ত্বের বিষয় বলে৷ 3 কিন্তু য়ে ভাববাণী বলে, সে মানুষকে গড়ে তোলে, উত্সাহ ও সান্ত্বনা দেয়৷ 4 যার বিশেষ ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা আছে সে নিজেকেই গড়ে তোলে; কিন্তু য়ে ভাববাণী বলার ক্ষমতা পেয়েছে সে মণ্ডলীকে গড়ে তোলে৷ 5 আমার ইচ্ছা য়ে তোমরা সকলে বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা পাও; কিন্তু আমার আরো বেশী ইচ্ছা এই তোমরা য়েন ভাববাণী বলতে পার৷ য়ে ব্যক্তি বিশেষ ভাষায় কথা বলে কিন্তু মণ্ডলীকে গড়ে তোলার জন্য তার অর্থ বুঝিয়ে দেয় না, তার থেকে য়ে ভাববাণী বলে সেই বরং বড়৷ 6 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি যদি তোমাদের কাছে এসে কোন প্রকাশিত সত্য জ্ঞান, ভাববাণী বা কোন শিক্ষার বিষয়ে না বলে নানা ভাষায় কথা বলি, তাতে তোমাদের কোন লাভ হবে না৷ 7 বাঁশী বা বীণার মতো জড় বস্তু, যা সুন্দর সুর সৃষ্টি করে তা যদি স্পষ্ট ধ্বনিতে না বাজে তবে বাঁশীতে বা বীণাতে কি সুর বাজছে তা কিভাবে বোঝা যাবে? 8 আর তূরীর আওয়াজ যদি অস্পষ্ট হয়, তবে যুদ্ধে যাবার জন্য কে প্রস্তুত হবে? 9 ঠিক তেমনি, তোমাদের জিভ যদি বোধগম্য কথা না বলে, তবে তোমরা কি বললে তা কে জানবে? কারণ এ ধরণের কথা বলার অর্থ বাতাসের সঙ্গে কথা বলা৷ 10 নিঃসন্দেহে বলা যায় য়ে, জগতে অনেক রকম ভাষা আছে, আর সেগুলির প্রত্যেকটারই অর্থ আছে৷ 11 তাই, সেই সব ভাষার অর্থ যদি আমি না বুঝতে পারি, তবে য়ে সেই ভাষায় কথা বলছে তার কাছে আমি একজন বিদেশীর মতো হব; আর সেও আমার কাছে বিদেশীর মতো হবে৷ 12 তোমাদের ক্ষেত্রেও ঠিক সেরকমই; যখন তোমরা আত্মিক বরদান লাভ করার জন্য উদগ্রীব, তখন যা মণ্ডলীকে গড়ে তোলে সে বিষয়ে উত্কৃষ্ট হবার চেষ্টা কর৷ 13 তাই, য়ে লোক বিশেষ ভাষায় কথা বলে, সে প্রার্থনা করুক য়েন তার অর্থ সে বুঝিয়ে দিতে পারে৷ 14 কারণ আমি যদি কোন বিশেষ ভাষায় প্রার্থনা করি, তবে আমার আত্মা প্রার্থনা করছে, কিন্তু আমার বুদ্ধির কোন উপকার হয় না৷ 15 তাহলে আমার কি করা উচিত? আমি আত্মায় প্রার্থনা করব, আবার আমার মন দিয়েও প্রার্থনা করব৷ আমি আত্মাতে স্তব গীত করব আবার মন দিয়েও স্তব গীত করব৷ 16 কারণ তুমি হয়তো তোমার আত্মাতে ঈশ্বরের প্রশংসা করছ, কিন্তু য়ে লোক কেবল শ্রোতা হিসাবে সেখানে আছে সে না বুঝে কেমন করে তোমার ধন্যবাদে ‘আমেন’ বলবে? কারণ তুমি কি বলছ, তা তো সে বুঝতে পারছে না৷ 17 তুমি হয়তো খুব সুন্দরভাবে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছ, কিন্তু এর দ্বারা অপরকে আত্মিকভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে না৷ 18 আমি তোমাদের সকলের থেকে অনেক বেশী বিশেষ ভাষায় কথা বলতে পারি বলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 19 কিন্তু মণ্ডলীর মধ্যে, বিশেষ ভাষায় দশ হাজার শব্দ বলার থেকে, বরং আমি বুদ্ধিপূর্বক পাঁচটি কথা বলতে চাই, য়েন এর দ্বারা অপরে শিক্ষালাভ করে৷ 20 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা বালকদের মতো চিন্তা করো না, বরং মন্দ বিষয়ে শিশুদের মতো হও, কিন্তু তোমাদের চিন্তায় পরিণত বুদ্ধি হও৷ 21 বিধি-ব্যবস্থায় (শাস্ত্রে) বলে:‘অন্য ভাষার লোকদের দ্বারা ও অন্য দেশীয়দের মুখ দিয়ে আমি এই জাতির সঙ্গে কথা বলব; কিন্তু সেই লোকরা আমার কথা শুনবে না৷’যিশাইয় 28:11-12প্রভু এই কথা বলেন৷ 22 তাই বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা, এই চিহ্ন বিশ্বাসীদের জন্য নয় বরং তা অবিশ্বাসীদের জন্যই৷ কিন্তু ভাববাণী অবিশ্বাসীদের জন্য নয়, তা বিশ্বাসীদের জন্যই৷ 23 সেই জন্য যখন সমগ্র মণ্ডলী সমবেত হয়, তখন যদি প্রত্যেকে বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলতে থাকে; আর সেখানে যদি কোন অবিশ্বাসী বা অন্য কোন বাইরের লোক প্রবেশ করে, তবে তারা কি বলবে না য়ে তোমরা পাগল? 24 কিন্তু যদি সকলে ভাববাণী বলে, সেই সময় যদি কোন অবিশ্বাসী লোক বা অন্য কোন সাধারণ লোক সেখানে আসে, তবে সেই ভাববাণী শুনে সে তার পাপের বিষয়ে সচেতন এবং সেই ভাববাণীর দ্বারাই বিচারপ্রাপ্ত হয়৷ 25 এইভাবে তার অন্তরের গোপন চিন্তা সকল প্রকাশ পায়৷ সে তখন মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে ঈশ্বরের উপাসনা করবে আর বলবে, ‘বাস্তবিকই, তোমাদের মধ্যে ঈশ্বর আছেন৷ 26 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তাহলে তোমরা কি করবে? তোমরা যখন উপাসনার জন্য এক জায়গায় সমবেত হও, তখন কেউ স্তব গীত করবে, কেউ শিক্ষা দেবে, কেউ যদি কোন সত্য প্রকাশ করে, তবে সে তা বলবে, কেউ বিশেষ ভাষায় কথা বলবে, আবার কেউ বা তার ব্যাখ্যা করে দেবে; কিন্তু সব কিছুই য়েন মণ্ডলী গঠনের জন্য হয়৷ 27 দুজন কিংবা তিনজনের বেশী য়েন কেউ অজানা ভাষায় কথা না বলে৷ প্রত্যেকে য়েন পালা করে বলে, আর একজন য়েন তার অর্থ বুঝিয়ে দেয়৷ 28 অর্থ বুঝিয়ে দেবার লোক যদি না থাকে, তাহলে সেই ধরণের বক্তা য়েন মণ্ডলীতে নীরব থাকে৷ সে য়েন কেবল নিজের সঙ্গে ও ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলে৷ 29 কেবলমাত্র দুই বা তিনজন ভাববাদী কথা বলুক এবং অন্যেরা তা বিচার করুক৷ 30 সেখানে বসে আছে এমন কারো কাছে যদি ঈশ্বরের কোন বার্তা আসে তবে প্রথমে য়ে ভাববাণী বলছিল সে চুপ করুক, 31 যাতে একের পর এক সকলে ভাববাণী বলতে পারে ও সকলে শিক্ষালাভ করে ও উত্সাহিত হয় এবং 32 ভাববাদীদের আত্মা ও ভাববাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ 33 কারণ ঈশ্বর কখনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন না, তিনি শান্তির ঈশ্বর, যা ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের মণ্ডলীগুলিতে সত্য৷ 34 মণ্ডলীতে স্ত্রীলোকেরা নীরব থাকুক৷ ঈশ্বরের লোকদের সমস্ত মণ্ডলীতে এই রীতি প্রচলিত আছে৷ স্ত্রীলোকদের কথা বলার অনুমোদন নেই৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থা য়েমন বলে সেইমত তারা বাধ্য হয়ে থাকুক৷ 35 স্ত্রীলোকেরা যদি কিছু শিখতে চায় তবে তারা ঘরে নিজেদের স্বামীদের কাছে তা জিজ্ঞেস করুক, কারণ সমাবেশে কথা বলা স্ত্রীলোকের পক্ষে লজ্জার বিষয়৷ 36 তোমাদের মধ্য থেকেই কি ঈশ্বরের শিক্ষা প্রসারিত হয়েছিল? অথবা কেবল তোমাদের কাছেই কি তা এসেছিল? 37 যদি কেউ নিজেকে ভাববাদী বলে বা আত্মিক বরদান লাভ করেছে বলে মনে করে, তবে সে স্বীকার করুক য়ে আমি তোমাদের কাছে যা লিখছি সে সব প্রভুরই আদেশ; 38 আর যদি কেউ তা অবজ্ঞা করে তবে সে অবজ্ঞার শিকার হবে৷ 39 অতএব, আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা ভাববাণী বলার জন্য আগ্রহী হও এবং বিশেষ ভাষায় কথা বলতে লোকদের নিষেধ করো না, 40 কিন্তু সবকিছু য়েন যথাযথভাবে করা হয়৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের কাছে আমি য়ে সুসমাচার প্রচার করেছি, এখন আমি সে কথা তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি৷ তোমরা এই বার্তা গ্রহণ করেছ ও সবল আছ৷ 2 এই বার্তার মাধ্যমে তোমরা উদ্ধার পেয়েছ, অবশ্য তোমরা যদি তা ধরে রাখ এবং তাতে পূর্ণরূপে বিশ্বাস রাখ৷ তা না করলে তোমাদের বিশ্বাস বৃথা হয়ে যাবে৷ 3 আমি য়ে বার্তা পেয়েছি তা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি৷ সেগুলি এইরকম: শাস্ত্রের কথা মতো খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরলেন, 4 এবং তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল৷ আবার শাস্ত্রের কথা মতো মৃত্যুর তিন দিন পর তাঁকে মৃতদের মধ্যে থেকে জীবিত করা হল৷ 5 আর তিনি পিতরকে দেখা দিলেন এবং পরে সেই বারোজন প্রেরিতকে দেখা দিলেন৷ 6 এরপর তিনি একসঙ্গে সংখ্যায় পাঁচশোর বেশী বিশ্বাসী ভাইদের দেখা দিলেন৷ তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোক এখনও জীবিত আছেন, কিছু লোক হয়তো এতদিনে মারা গেছেন৷ 7 এরপর তিনি যাকোবকে দেখা দিলেন এবং পরে প্রেরিতদের সকলকে দেখা দিলেন৷ 8 সব শেষে অসময়ে জন্মেছি য়ে আমি সেই আমাকেও দেখা দিলেন৷ 9 প্রেরিতরা আমার থেকে মহান, কারণ ঈশ্বরের মণ্ডলীকে আমি নির্য়াতন করতাম, প্রেরিত নামে পরিচিত হবার য়োগ্যও আমি নই৷ 10 কিন্তু এখন আমি যা হয়েছি, তা ঈশ্বরের অনুগ্রহের গুনেই হয়েছে৷ আমার প্রতি তাঁর য়ে অনুগ্রহ তা নিষ্ফল হয় নি, বরং আমি তাদের সকলের থেকে অধিক পরিশ্রম করেছি৷ তবে আমি য়ে এই কাজ করেছিলাম তা নয়; কিন্তু আমার মধ্যে ঈশ্বরের য়ে অনুগ্রহ ছিল তাতেই তা সন্ভব হয়েছে৷ 11 সুতরাং আমি বা অন্যরা যারাই তোমাদের কাছে প্রচার করে থাকি না কেন, সকলে একই সুসমাচার প্রচার করেছিলাম, যা তোমরা বিশ্বাস করেছ৷ 12 কিন্তু আমরা যদি প্রচার করে থাকি য়ে খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন, তখন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ কি করে বলছে য়ে মৃতদের পুনরুত্থান নেই? 13 মৃতদের যদি পুনরুত্থান না হয়, তাহলে খ্রীষ্টও তো উত্থাপিত হন নি, 14 আর খ্রীষ্ট যদি পুনরুত্থিত না হয়ে থাকেন তাহলে তো আমাদের সেই সুসমাচার ভিত্তিহীন, আর তোমাদের বিশ্বাসও ভিত্তিহীন৷ 15 আবার আমরা য়ে ঈশ্বরের বিষয়ে মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছি, সেই দোষে আমরা দোষী সাব্যস্ত হব, কারণ আমরা ঈশ্বরের বিষয়ে প্রচার করতে গিয়ে একথা বলেছি য়ে তিনি খ্রীষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ 16 মৃতদের পুনরুত্থান যদি না হয়, তবে খ্রীষ্টও মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হন নি; 17 আর খ্রীষ্ট যদি পুনরুত্থিত না হয়ে থাকেন, তাহলে তোমাদের বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই, তোমরা এখনও তোমাদের পাপের মধ্যেই আছ৷ 18 হ্যাঁ, আর খ্রীষ্টানুসারী যারা মারা গেছে তারা সকলেই বিনষ্ট হয়েছে৷ 19 খ্রীষ্টের প্রতি প্রত্যাশা যদি শুধু এই জীবনের জন্যই হয়, তবে অন্য লোকদের চেয়ে আমাদের দশা শোচনীয় হবে৷ 20 কিন্তু সত্যিই খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন, আর য়েসব ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তিনি তাদের মধ্যে প্রথম ফসল৷ 21 কারণ একজন মানুষের মধ্য দিয়ে য়েমন মৃত্যু এসেছে, মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থানও তেমনিভাবেই একজন মানুষের দ্বারা এসেছে৷ 22 কারণ আদমে য়েমন সকলের মৃত্যু হয়, ঠিক সেভাবে খ্রীষ্টে সকলেই জীবন লাভ করবে৷ 23 কিন্তু প্রত্যেকে তার পালাক্রমে জীবিত হবে; খ্রীষ্ট, যিনি অগ্রনী, তিনি প্রথমে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হলেন, আর এরপর যারা খ্রীষ্টের লোক তারা তাঁর পুনরুত্থানের সময়ে জীবিত হয়ে উঠবে৷ 24 এরপর খ্রীষ্ট যখন প্রত্যেক শাসনকর্তার কর্ত্তৃত্ব ও পরাক্রমকে পরাস্ত করে পিতা ঈশ্বরের হাতে রাজ্য সঁপে দেবেন তখন সমাপ্তি আসবে৷ 25 কারণ যতদিন না ঈশ্বর তাঁর সমস্ত শত্রুকে খ্রীষ্টের পদানত করছেন, ততদিন খ্রীষ্টকে রাজত্ব করতে হবে৷ 26 শেষ শত্রু হিসেবে মৃত্যুও ধ্বংস হবে৷ 27 কারণ, ‘ঈশ্বর সব কিছুই তাঁর অধীনস্থ করে তাঁর পায়ের তলায় রাখবেন৷’ যখন বলা হচ্ছে য়ে, ‘সব কিছু’ তাঁর অধীনস্থ করা হয়েছে, তখন এটি স্পষ্ট য়ে ঈশ্বর নিজেকে বাদ দিয়ে সব কিছু খ্রীষ্টের অধীনস্থ করেছেন৷ 28 সব কিছু খ্রীষ্টের অধীনস্থ হলে পুত্র ঈশ্বরের অধীনস্থ হবেন৷ য়েন ঈশ্বর, যিনি তাঁকে সব কিছুর ওপর কর্ত্তৃত্ব করতে দিয়েছেন, তিনিই সর্বেসর্বা হন৷ 29 কিন্তু যারা মৃত লোকদের উদ্দেশ্যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে তাদের কি হবে? মৃতেরা যদি কখনও পুনরুত্থিত না হয়, তাহলে তাদের জন্য এই লোকেরা কেন বাপ্তাইজ হয়? 30 আমরাই বা কেন প্রতি মুহূর্তে বিপদের সম্মুখীন হই? 31 আমি প্রতিদিন মরছি৷ খ্রীষ্ট যীশুতে তোমাদের জন্য আমার য়ে গর্ব আছে তারই দোহাই দিয়ে আমি বলছি, একথা সত্য৷ 32 যদি শুধু মানবিক স্তরে ইফিষের সেই হিংস্র পশুদের সঙ্গে যুদ্ধ করে থাকি তাহলে আমার কি লাভ হয়েছে? কিছুই না৷ মৃতদের যদি পুনরুত্থান নেই তবে, ‘এস ভোজন পান করি কারণ কাল তো আমরা মরবই৷’ 33 ভ্রান্ত হযো না, ‘অসত্ সঙ্গ সচ্চরিত্র নষ্ট করে৷’ 34 চেতনায় ফিরে এস, পাপ কাজ বন্ধ কর, কারণ তোমাদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা ঈশ্বর সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অজ্ঞ৷ তোমাদের লজ্জা দেবার জন্যই আমি একথা বলছি৷ 35 কিন্তু কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করবে, ‘মৃতেরা কি করে পুনরুত্থিত হয়? তাদের কি রকম দেহই বা হবে?’ 36 কি নির্বোধের মত প্রশ্ন! তোমরা য়ে বীজ বোনো, তা না মরা পর্যন্ত জীবন পায় না৷ 37 তুমি যা বোনো, য়ে ‘দেহ’ উত্পন্ন হবে তুমি তা বোনো না, তার বীজ মাত্র বোনো, সে গমের বা অন্য কিছুর হোক৷ 38 তারপর ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে তিনি তার জন্য একটা দেহ দেন৷ প্রতিটি বীজের জন্য তাদের নিজের নিজের দেহ দেন৷ 39 সকল প্রাণীর মাংস এক রকমের নয়; কিন্তু মানুষদের এক রকমের মাংস, পশুদের আর এক ধরণের মাংস, পক্ষীদের আবার অন্য রকমের মাংস৷ 40 সেই রকম স্বর্গীয় দেহগুলি য়েমন আছে, তেমনি পার্থিব দেহগুলিও আছে৷ স্বর্গীয় দেহগুলির এক প্রকার ঔজ্জ্বল্য, আবার পার্থিব দেহগুলির অন্যরকম৷ 41 সূর্যের এক প্রকারের ঔজ্জ্বল্য, চাঁদের আর এক ধরণের, আবার নক্ষত্রদের অন্য ধরণের৷ একটা নক্ষত্র থেকে অন্য নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য ভিন্ন৷ 42 মৃতদের পুনরুত্থানও সেই রকম৷ য়ে দেহ কবর দেওয়া হয় তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা অক্ষয়৷ 43 য়ে দেহ মাটিতে কবর দেওয়া হয়, তার কোন কদর থাকে না, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা গৌরবজনক৷ য়ে দেহ মাটিতে কবরস্থ হয়, তা দুর্বল, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা শক্তিশালী৷ 44 য়ে দেহ মাটিতে কবরস্থ হয় তা জৈবিক দেহ; আর য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা আত্মিক দেহ৷যখন জৈবিক দেহ আছে, তখন আত্মিক দেহও আছে৷ 45 শাস্ত্রে এই কথাও বলছে: ‘প্রথম মানুষ (আদম) সজীব প্রাণী হল;আর শেষ আদম (খ্রীষ্ট) জীবনদায়ক আত্মা হলেন৷ 46 যা আত্মিক তা প্রথম নয় বরং যা জৈবিক তাই প্রথম; যা আত্মিক তা এর পরে আসে৷ 47 প্রথম মানুষ আদম এলেন পৃথিবীর ধূলো থেকে, দ্বিতীয় মানুষ (খ্রীষ্ট) এলেন স্বর্গ থেকে৷ 48 মৃত্তিকার মানুষটি য়েমন ছিল, পৃথিবীর অন্যান্য মানুষও তেমন; আর স্বর্গীয় মানুষরা সেই স্বর্গীয় মানুষ খ্রীষ্টের মত৷ 49 আমরা য়েমন মৃত্তিকার সেই মানুষদের মতো গড়া, তেমন আবার আমরা সেই স্বর্গীয় মানুষ খ্রীষ্টের মত হব৷ 50 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের বলছি: আমাদের রক্ত মাংস ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হতে পারে না৷ যা কিছু ক্ষয়শীল তা অক্ষয়তার অধিকারী হতে পারে না৷ 51 শোন, আমি তোমাদের এক নিগূঢ়তত্ত্ব বলি৷ আমরা সকলে মরব এমন নয়, কিন্তু আমাদের সকলেরই রূপান্তর ঘটবে৷ 52 এক মুহূর্তের মধ্যে যখন শেষ তূরী বাজবে তখন চোখের পলকে তা ঘটবে৷ হ্যাঁ, তূরী বাজবে, তাতে মৃতেরা সকলে অক্ষয় হয়ে উঠবে, আর আমরা সকলে রূপান্তরিত হব৷ 53 কারণ এই ক্ষয়শীল দেহকে অক্ষয়তার পোশাক পরতে হবে; আর এই পার্থিব নশ্বর দেহ অবিনশ্বরতায় ভুষিত হবে৷ 54 এই ক্ষয়শীল দেহ যখন অক্ষয়তার পোশাক পরবে আর এই পার্থিব দেহ যখন অবিনশ্বরতায় ভূষিত হবে তখন শাস্ত্রে য়ে কথা লেখা আছে তা সত্য হবে:‘মৃত্যু জয়ে কবলিত হল৷’যিশাইয় 25:8 55 ‘মৃত্যু তোমার জয় কোথায়? মৃত্যু তোমার হুল কোথায়?’হোশেয় 13:14 56 মৃত্যুর হুল পাপ আর পাপের শক্তি আসে বিধি-ব্যবস্থা থেকে৷ 57 কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ তিনিই আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমাদের বিজযী করেন৷ 58 তাই আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সুস্থির ও সুদৃঢ় হও৷ প্রভুর কাজে নিজেকে সব সময় সম্পূর্ণভাবে সঁপে দাও, কারণ তোমরা জান, প্রভুর জন্য তোমাদের পরিশ্রম নিষ্ফল হবে না৷
1 এখন ঈশ্বরের লোকদের দেবার জন্য অর্থ সংগ্রহের বিষয় বলছি: গালাতীয়ার মণ্ডলীকে আমি য়েমন বলেছিলাম তোমরাও তেমন করবে; 2 সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার তোমরা তোমাদের উপার্জন থেকে সঙ্গতী অনুসারে যতটা সন্ভব বাঁচিয়ে সেই অর্থ গৃহে বিশেষ কোন স্থানে আলাদা করে জমাবে৷ তাহলে আমি যখন আসব তখন অর্থ সংগ্রহ করার প্রযোজন হবে না৷ 3 আমি যখন পৌঁছব, তখন তোমরা যাদের য়োগ্য বলে মনে কর তাদের হাত দিয়ে সেই অর্থ জেরুশালেমে পাঠাবে৷ আমার লেখা চিঠি পরিচয়পত্র হিসাবে তারা নিয়ে যাবে; 4 আর আমার যাওয়া যদি ঠিক বলে মনে হয় তবে তারা আমার সঙ্গেই যাবে৷ 5 আমি মাকিদনিয়া হয়ে যাবার পরিকল্পনা করছি৷ মাকিদনিয়ার মধ্য দিয়ে যাবার পথে তোমাদের ওখানে যাব৷ 6 সন্ভব হলে হয়তো কিছুদিন তোমাদের ওখানে থেকে যাব৷ শীতকালটা হয়তো তোমাদের ওখানেই কাটাব৷ এরপর তোমাদের কাছ থেকে আমি য়েখানে যাব, আমার সেখানে যাবার ব্যবস্থায় তোমরা সাহায্য করতে পারবে৷ 7 এখন যাত্রাপথে তোমাদের সঙ্গে দেখা করতে চাই না৷ প্রভুর ইচ্ছা হলে তোমাদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাবার ইচ্ছা আছে৷ 8 পঞ্চাশত্তমীর দিন পর্যন্ত আমি ইফিষে থাকব৷ 9 কারণ এখানে য়ে কাজে ফল পাওয়া যায় সেই রকম কাজের জন্য একটা মস্ত বড় সুয়োগ আমার সামনে এসেছে, যদিও এখানে অনেকে বিরোধিতা করছে৷ 10 তীমথিয় তোমাদের কাছে য়েতে পারেন, তাঁকে আদর যত্ন করো৷ তোমাদের সঙ্গে তিনি য়েন নির্ভয়ে থাকতে পারেন৷ তিনিও আমার মতো প্রভুর কাজ করছেন, কেউ য়েন তাঁকে তাচ্ছিল্য না করে৷ 11 তাঁকে তোমরা তাঁর যাত্রা পথে শান্তিতে এগিয়ে দিও, য়েন তিনি আমার কাছে আসতে পারেন৷ ভাইদের সঙ্গে নিয়ে তিনি আমার কাছে আসবেন এই প্রত্যাশায় আছি৷ 12 এখন আমি তোমাদের ভাই আপল্লোর বিষয়ে বলি: আমি তাঁকে অনেক ভাবে উত্সাহিত করেছি য়েন তিনি অন্যান্য ভাইদের সঙ্গে তোমাদের কাছে যান৷ কিন্তু এটা পরিষ্কার য়ে তোমাদের কাছে যাবার ইচ্ছা তাঁর এখন নেই৷ তিনি সুয়োগ পেলেই তোমাদের কাছে যাবেন৷ 13 তোমরা সতর্ক থেকো, বিশ্বাসে স্থির থেকো, সাহস য়োগাও, বলবান হও৷ 14 তোমরা যা কিছু কর তা ভালবাসার সঙ্গে কর৷ 15 আমার ভাইয়েরা, আমি তোমাদের কাছে একটা অনুরোধ করছি, তোমরা স্তিফান ও তাঁর পরিবারের বিষয়ে জান৷ আখায়াতে (গ্রীসে) তাঁরাই প্রথম খ্রীষ্টানুসারী হন৷ এখন তাঁরা খ্রীষ্টানুসারীদের সেবায় নিজেদের নিযোগ করেছেন৷ ভাইয়েরা, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ, 16 তোমরা এইরকম লোকদের, যারা প্রভুর সেবায় নিযুক্ত আছেন, তাঁদের নেতৃত্ব মেনে নাও৷ 17 আমি খুব খুশী কারণ স্তিফান, ফর্তুনাত আর আখায়া এখানে এসে তোমাদের না থাকার অভাব পূর্ণ করে দিয়েছেন৷ 18 তাঁরা তোমাদের মতো আমার আত্মাকে তৃপ্ত করেছেন৷ তাই তোমরা এরূপ লোকদের চিনতে ভুল করো না৷ 19 এশিয়ার সমস্ত মণ্ডলী তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ আক্কিলা ও প্রিষ্কা আর তাঁদের বাড়িতে যারা উপাসনার জন্য সমবেত হন তাঁরা সকলে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 20 তোমরা পরস্পর একে অপরকে পবিত্র চুম্বনে শুভেচ্ছা জানিও৷ 21 আমি পৌল, আমি নিজের হাতে এই শুভেচ্ছা বাণী লিখে পাঠালাম৷ 22 প্রভুকে য়ে ভালবাসে না তার ওপর অভিশাপ নেমে আসুক৷ আমাদের প্রভু আসুন৷ 23 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সঙ্গে থাকুক৷ 24 খ্রীষ্ট যীশুতে তোমাদের সকলের জন্য আমার ভালবাসা রইল৷
1 আমি পৌল, ঈশ্বরের ইচ্ছায় খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত হয়েছি৷ আমি এবং আমাদের বিশ্বাসী ভাই তীমথিয়, করিন্থ শহরের ঈশ্বরের খ্রীষ্ট মণ্ডলী ও সমগ্র আখায়া প্রদেশে ঈশ্বরের সব লোকদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি: 2 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তোমাদের সকলকে অনুগ্রহ ও শান্তি দান করুন৷ 3 ধন্য আমাদের ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা৷ তিনি করুণাময় পিতা ও সকল সান্ত্বনার ঈশ্বর৷ 4 তিনি আমাদের সমস্ত দুঃখ কষ্টের মধ্যে সান্ত্বনা দেন, য়েন অপরে যখন দুঃখ কষ্টের মধ্যে পড়ে তখন ঈশ্বরের কাছ থেকে আমরা য়ে সান্ত্বনা লাভ করেছি তাদের সেই সান্ত্বনা দিতে পারি৷ 5 কারণ আমরা যতই খ্রীষ্টের দুঃখ কষ্টের সহভাগী হব, ততই তাঁর মধ্য দিয়ে সান্ত্বনাও পাব৷ 6 আমরা যদি কষ্ট পাই তবে তা তোমাদের সান্ত্বনার ও পরিত্রাণের জন্য; আর যদি সান্ত্বনা পাই তবে তা তোমাদের সান্ত্বনার উদ্দেশ্যেই পাই৷ এই সান্ত্বনা আমাদের মত তোমাদেরও একই দুঃখ সহ্য করার শক্তি ও ধৈর্য্য য়োগায়৷ 7 তোমাদের বিষয়ে আমরা সুনিশ্চিত, কারণ আমরা জানি তোমরা য়েমন আমাদের দুঃখ কষ্টের সহভাগী, সেই রকম আমাদের সান্ত্বনার সহভাগী৷ 8 ভাই ও বোনেরা, এশিয়াতে থাকার সময় আমাদের য়ে কষ্ট হয়েছিল তা তোমাদের জানাতে চাইছি৷ সেই দুঃখ কষ্টের চাপ আমাদের সহ্যের অতিরিক্ত হয়ে উঠেছিল৷ আমরা বাঁচার সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম৷ 9 আমরা নিজেদের অন্তরে অনুভব করেছিলাম য়ে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য়; কিন্তু এটা এইজন্য ঘটেছিল যাতে আমরা নিজেদের ওপর নির্ভর না করে, ঈশ্বর যিনি মৃতকে জীবিত করে তোলেন তাঁর ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করি৷ 10 তিনিই আমাদের এত ভয়ঙ্কর মৃত্যু থেকে উদ্ধার করলেন৷ আমরা তাঁর ওপর প্রত্যাশা রাখি য়ে তিনি ভবিষ্যতেও আমাদের উদ্ধার করবেন; 11 তোমরা প্রার্থনা করে আমাদের সাহায্য করতে পার৷ তাহলে অনেকের প্রার্থনার উত্তরে ঈশ্বর আমাদের য়ে আশীর্বাদ করবেন, তার দরুন আমাদের জন্য অনেকেই ধন্যবাদ দেবে৷ 12 একটি বিষয়ে আমরা গর্বিত এবং আমাদের বিবেকও এই সাক্ষী দিচ্ছে য়ে আমরা ঈশ্বরের দেওয়া আন্তরিকতা ও সরলতায় জগতের মানুষের প্রতি, বিশেষ করে তোমাদের প্রতি আচরণ করে এসেছি৷ সংসারের জ্ঞান বুদ্ধি ব্যবহার করে নয়, ঈশ্বরের অনুগ্রহে আমরা তা করেছি৷ 13 হ্যাঁ, তোমরা যা পড়তে বা বুঝতে পারবে না এমন কোন কিছু আমি তোমাদের লিখছি না৷ আশা করি তোমরা সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারবে৷ 14 য়েমন তোমরা আমাদের সম্বন্ধে কিছুটা বুঝেছ৷ আমাদের প্রভু যীশুর পুনরাবির্ভাবের দিনে তোমরা য়েমন আমাদের গর্বের বিষয় হবে, তেমনি আমরাও তোমাদের গর্বের বিষয় হব৷ 15 আমার মনে এই বিষয়ে এতটা আত্মবিশ্বাস ছিল য়ে আমি প্রথমেই তোমাদের কাছে যাব বলে ঠিক করেছিলাম, যাতে তোমরা দ্বিতীয়বার উপকৃত হও৷ 16 আমি ঠিক করেছিলাম মাকিদনিয়ায় যাওয়ার পথে তোমাদের ওখানে যাব; আবার মাকিদনিয়া থেকে ফেরার পথেও তোমাদের কাছেই যাব৷ তাহলে তোমরা সকলে প্রযোজনীয় সব জিনিস সমেত আমার যিহূদিয়ায় যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেবে৷ 17 এই পরিকল্পনা করার সময় কি আমি মনস্থির করি নি? আমি কি জগতের সেই লোকদের মত যাঁরা একই সঙ্গে ‘হ্যাঁ-হ্যাঁ,’ আবার ‘না-না’ বলে, তেমনি করে কি আমি কিছু ঠিক করি? 18 ঈশ্বর বিশ্বস্ত, একথা য়েমন সত্যি তেমনি এটাও সত্যি য়ে তোমাদের কাছে আমাদের কথা একই সঙ্গে’হ্যাঁ’ এবং ‘না’ দুই হয় না৷ 19 ঈশ্বরের পুত্র য়ে যীশু খ্রীষ্টের কথা আমি, তীমথিয় এবং শীল তোমাদের কাছে প্রচার করেছিলাম, সেই যীশু একই সময়ে ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’ নন৷ তিনি সব সময়েই ‘হ্যাঁ’৷ 20 ঈশ্বরের সমস্ত প্রতিশ্রুতি তাঁর মধ্য দিয়ে ‘হ্যাঁ’ হয়ে ওঠে৷ সেইজন্য ঈশ্বরের গৌরব করতে আমরা খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে ‘আমেন’ বলি৷ 21 ঈশ্বরই একজন, যিনি তোমাদের ও আমাদের খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত করে সুদৃঢ় করে তোলেন৷ 22 আমরা য়ে তাঁর নিজস্ব এই কথা নিশ্চিতভাবে বুঝতে তিনি আমাদের ওপর তাঁর ছাপ দিয়েছেন; এবং তাঁর সব প্রতিশ্রুতির জামিন হিসাবে পবিত্র আত্মাকে আমাদের অন্তরে দিয়েছেন৷ 23 কিন্তু আমি ঈশ্বরকে সাক্ষী রেখে বলছি, তোমাদের শাস্তি থেকে রেহাই দেবার জন্যই আমি এখন পর্যন্ত করিন্থে ফিরে যাই নি৷ 24 তোমাদের বিশ্বাসের বিষয়ে আমরা যা বলে দেব তাই-ই তোমাদের মেনে চলতে হবে, এমনটা আমরা চাই না, বরং তোমরা য়েন আনন্দ পাও তাই তোমাদের সহকর্মী হয়ে কাজ করতে চাই, কারণ তোমরা বিশ্বাসে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছ৷
1 তাই আমি স্থির করেছিলাম য়ে আবার তোমাদের দুঃখ দেওয়ার জন্য তোমাদের কাছে যাব না৷ 2 কারণ তোমাদের যদি আমি দুঃখ দিই তবে আমাকে সুখী করবে কে? একমাত্র তোমরাই যাঁরা আমার কাছে দুঃখ পেয়েছ৷ 3 এইজন্য সেই সব কথা লিখেছিলাম, যাতে যখন আমি আসব তখন যাদের কাছ থেকে আমার আনন্দ পাওয়া উচিত, তাদের কাছ থেকে আমায় য়েন দুঃখ পেতে না হয়৷ কারণ তোমাদের সকলের বিষয়ে আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই য়ে আমার আনন্দে তোমাদের সকলেরই আনন্দ৷ 4 অনেক কষ্ট, মনো বেদনা ও চোখের জলের মধ্যে দিয়ে সেই চিঠি তোমাদের লিখেছিলাম৷ আমি তোমাদের ব্যথা দিতে চাই নি; কিন্তু বোঝাতে চেয়েছিলাম য়ে আমি তোমাদের কতো ভালবাসি৷ 5 কিন্তু কেউ যদি ব্যথা দিয়ে থাকে তবে সে য়ে শুধু আমাকে ব্যথা দিয়েছে তা নয়, বেশী বাড়িয়ে না বলে এটুকু বলছি য়ে, তোমাদের সকলকেই সে কিছু পরিমাণ ব্যাথা দিয়েছে৷ 6 তোমাদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোক মিলে এই ধরণের লোককে য়ে শাস্তি দিয়েছ সেটাই তার পক্ষে যথেষ্ট৷ 7 কিন্তু এখন তোমাদের বরং তাকে ক্ষমা করা ও সান্ত্বনা দেওয়া উচিত৷ তা না হলে সে হয়তো অত্যধিক মনোবেদনায় হতাশ হয়ে পড়বে৷ 8 আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা য়ে তাকে এখনও ভালবাস এটা তাকে বুঝতে দাও৷ 9 তোমরা সমস্ত বিষয়ে আমার বাধ্য হও কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে আমি তোমাদের কাছে সেই চিঠিটা লিখেছিলাম৷ 10 যদি তোমরা কাউকে ক্ষমা কর, আমিও তাকে ক্ষমা করি৷ যদি ক্ষমা করার মত কিছু থেকেই থাকে তবে আমি যা ক্ষমা করেছি তা খ্রীষ্টের সামনে তোমাদের ভালোর জন্যেই করেছি৷ 11 য়েন আমরা শয়তানের চতুরতার দ্বারা প্রতারিত না হই, কারণ আমরা তার ষড়যন্ত্র সম্বন্ধে অজ্ঞ নই৷ 12 আমি যখন ত্রোয়াতে খ্রীষ্ট সম্বন্ধে সুসমাচার প্রচার করতে এসেছিলাম, তখন দেখলাম প্রভু কাজের জন্য নতুন দরজা খুলে দিয়েছেন৷ 13 কিন্তু আমি খুব উদ্বেগে ছিলাম, কারণ সেখানে আমি আমার ভাই তীতকে পাই নি; তাই আমি তাদের বিদায় জানিয়েছিলাম এবং মাকিদনিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম৷ 14 কিন্তু ঈশ্বর ধন্য, কারণ তিনি খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে সর্বদাই আমাদের জয়লাভের পথ দেখান এবং আমাদের মধ্য দিয়ে সর্বত্র তাঁর সম্বন্ধে জ্ঞান সৌরভের মত ছড়িয়ে দেন৷ 15 যাঁরা উদ্ধার পাচ্ছে এবং যাঁরা বিনাশ হচ্ছে তাদের সামনে আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে খ্রীষ্টের সুগন্ধযুক্ত ধূপ৷ 16 যাঁরা হারিয়ে যাচ্ছে তাদের কাছে আমরা মৃত্যুমূলক মৃত্যুজনক গন্ধ; কিন্তু যাঁরা পরিত্রাণ পাচ্ছে তাদের কাছে আমরা জীবনমূলক জীবনদায়ক গন্ধ, সুতরাং কে এইরকম কাজ করার উপযুক্ত? 17 অনেকে য়েমন করে সেরকম আমরা ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে লাভ করার জন্য ফেরিওয়ালার মত ফেরি করে বেড়াই না বরং খ্রীষ্টেতে আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে ঈশ্বর হতে আগত লোক হিসাবে ঈশ্বরের সামনে কথা বলি৷
1 আমরা এসব বলে কি আবার নিজেদের বিষয়ে প্রশংসা করতে শুরু করেছি? অথবা কোন কোন লোক য়েমন করে থাকে তেমনি তোমাদের কাছে আমাদেরও কি কোন পরিচয় পত্র নিয়ে য়েতে হবে, বা তোমাদের সুপারিশের কি আমাদের কোন প্রযোজন আছে? 2 তোমরাই আমাদের পরিচয় পত্র, যা আমাদের হৃদয়ে লেখা আছে, যা সমস্ত মানুষ জানতে ও পড়তে পারে৷ 3 তোমরা য়ে খ্রীষ্টের লেখা পত্র এবং আমরাই তা পৌঁছে দিয়েছি তা তো দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে৷ তা কালি দিয়ে লেখা নয়, কিন্তু জীবন্ত ঈশ্বরের আত্মা দিয়ে লেখা; পাথরের ফলকে লেখা নয়, মানুষের হৃদয়ের ফলকের ওপরই লেখা৷ 4 খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের ওপর আমাদের এই রকম দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে৷ 5 কিন্তু তার অর্থ এই নয় য়ে আমরা নিজেরা নিজেদের য়োগ্যতায় একাজ করতে পারি, তা করার শক্তি ঈশ্বরই দিয়ে থাকেন৷ 6 তিনিই আমাদের নতুন চুক্তির সেবক করেছেন৷ এই নতুন চুক্তি কোন লিখিত বিধি-ব্যবস্থা নয় কিন্তু আত্মিক ব্যবস্থা, কারণ লিখিত য়ে বিধি-ব্যবস্থা তা মৃত্যু নিয়ে আসে কিন্তু আত্মা জীবন দান করে৷ 7 যদি পাথরের ফলকেরওপর লেখা ব্যবস্থা, যার পরিণতি মৃত্যু, তা দেবার সময় এমন ঔজ্জ্বল্যের সাথে এসেছিল য়ে ইস্রায়েলের লোকেরা ঔজ্জ্বল্যের জন্য মোশির মুখের দিকে সোজা তাকাতে পারছিল না, যদিও সেই উজ্জ্বলতা ম্লান হয়ে যাচ্ছিল, 8 তবে আত্মার কাজ কি অনেক বেশী মহিমামণ্ডিত হবে না? 9 য়ে বিধি-ব্যবস্থায় মানুষ দোষী প্রতিপন্ন হচ্ছিল তা যদি মহিমামণ্ডিত হয়ে থাকে, তবে য়ে বিধি-ব্যবস্থা মানুষকে ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন করে তার মহিমা আরও কত না বেশী হবে৷ 10 বাস্তবিক তুলনায় নতুন বিধি-ব্যবস্থার মহিমার উজ্জ্বলতার কাছে পুরানো বিধি-ব্যবস্থার মহিমা ম্লান হয়ে যায়৷ 11 য়ে বিধি-ব্যবস্থা অল্প দিনের মধ্যে লোপ পেয়ে গেল তার মহিমা যদি এত উজ্জ্বল হয়ে থাকে, তবে য়ে বিধি-ব্যবস্থা চিরস্থাযী তার মহিমা আরও কত না বেশী উজ্জ্বল হবে! 12 অতএব আমাদের এই ধরণের প্রত্যাশা থাকাতে আমরা খুব নির্ভীক হতে পারি৷ 13 আমরা মোশির মত নই৷ মোশি তো নিজের মুখ ঢেকে রাখতেন যাতে ইস্রায়েলীয়রা সেই উজ্জ্বলতা দেখতে না পায়, কারণ সেই মহিমা কমতে কমতে মিলিয়ে যাচ্ছিল৷ 14 তাদের মন কঠোর হয়ে গিয়েছিল, কারণ যখন শাস্ত্র পড়া হয় তখন মনে হয় আজও তাদের সেই আবরণ রয়েই গেছে৷ সেই আবরণ এখনও সরে নি, একমাত্র খ্রীষ্টের মাধ্যমেই সেই আবরণ সরিয়ে দেওয়া সন্ভব৷ 15 হ্যাঁ, আজও মোশির বিধি-ব্যবস্থার পুস্তক পড়ার সময় তাদের হৃদয়ের ওপরে আবরণ থাকে৷ 16 কিন্তু যখনই কেউ প্রভুর দিকে ফেরে তখন সেই আবরণ সরে যায়৷ 17 এই প্রভু হলেন আত্মা, আর প্রভুর আত্মা য়েখানে সেখানেই স্বাধীনতা৷ 18 তাই, যখন আমরা অনাদৃত মুখে আয়নায় দেখা ছবির মত করে প্রভুর মহিমা দেখতে থাকি, তখন তা দেখতে দেখতে আমরা সকলেই তাঁর সেই (মহিমাময়) রূপে রূপান্তরিত হতে থাকি৷ সেই রূপান্তর আমাদের মহিমা থেকে উজ্জ্বলতর মহিমার মধ্যে নিয়ে যায়৷ এই মহিমা আমরা প্রভু, যিনি আজ্ঞা করেন তাঁর কাছ থেকে লাভ করি৷
1 ঈশ্বরের দয়ায় আমরা এই কাজের ভার পেয়েছি, তাই আমরা কখনও নিরাশ হই না; 2 বরং আমরা লজ্জাজনক গোপন কাজ একেবারেই করি না৷ আমরা কোন চাতুরী করি না, ঈশ্বরের শিক্ষাকে বিকৃত করি না; বরং যা সত্য তা স্পষ্টভাবে বলে ঈশ্বরের সামনে ও প্রতিটি মানুষের বিবেকের কাছে আমাদের সততা প্রকাশ করি৷ 3 কিন্তু আমরা য়ে সুসমাচার প্রচার করি তা যদি ঢাকা থাকে, তবে যাঁরা ধ্বংসের পথে চলেছে তাদের কাছেই ঢাকা থেকে যায়৷ 4 এই যুগের দেবতা অবিশ্বাসীদের মন অন্ধ করেছে, যাতে ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি য়ে খ্রীষ্ট, তাঁর মহিমার সুসমাচারের আলো তারা দেখতে না পায়৷ 5 আমরা নিজেদের কথা প্রচার করি না, বরং যীশু খ্রীষ্টকে প্রভু বলে প্রচার করছি এবং আমরা যীশুর অনুসারী বলেই নিজেদের যীশুর সেবক বলে দেখিয়ে থাকি৷ 6 কারণ য়ে ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘অন্ধকারের মধ্যে থেকে আলোর উদয় হবে!’, সেই তিনিই আমাদের অন্তরে ঈশ্বরের জ্ঞানের আলোর মহিমা প্রজ্জ্বলিত করেছিলেন, য়ে আলো খ্রীষ্টের মুখমণ্ডলেই প্রকাশিত রয়েছে৷ 7 কিন্তু এই সম্পদ আমরা মাটির পাত্রে অর্থাত্ এই মরণশীল দেহে ধারণ করছি, যাতে বুঝতে পারা যায় য়ে এই মহাপরাক্রম ঈশ্বরের কাছ থেকেই এসেছে, আমাদের নিজেদের কাছ থেকে আসে নি৷ 8 আমরা সবদিক দিয়েই নানা কষ্টদায়ক চাপের মধ্যে রয়েছি, কিন্তু ভেঙ্গে পড়ি নি৷ আমরা জানি না কি করব, অথচ হাল ছেড়ে দিই না৷ 9 আমরা অত্যাচারিত হলেও ঈশ্বর কখনও আমাদের ছেড়ে দেন না৷ আমাদের মেরে ধরাশাযী করে দিলেও আমরা ধ্বংস হচ্ছি না৷ 10 আমরা সবসময় যীশুর মতোই এই দেহে মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছি, যাতে যীশুর জীবনও আমাদের মর্ত্য দেহে প্রকাশ পায়৷ 11 আমরা যারা বেঁচে আছি আমাদের সবসময় যীশুর জন্য মৃত্যুর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, য়েন আমাদের মর্ত্য দেহে যীশুর জীবনও প্রকাশ পায়৷ 12 এইভাবে আমাদের মধ্যে মৃত্যু এবং তোমাদের মধ্যে জীবন কাজ করে চলেছে৷ 13 কিন্তু সেই বিশ্বাসের একই আত্মা আমাদের মধ্যে আছে৷ শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে, ‘আমি বিশ্বাস করেছি বলেই কথা বলেছি৷’তেমনি আমরা বিশ্বাস করেছি বলেই কথা বলছি৷ 14 কারণ আমরা জানি, ঈশ্বর প্রভু, যিনি যীশুকে পুনরুত্থিত করেছেন, তিনি যীশুর সঙ্গে আমাদেরও জীবিত করে তুলবেন এবং তোমাদের সঙ্গে আমাদের (খ্রীষ্টের কাছে) উপস্থিত করবেন৷ 15 সব কিছুই তোমাদের জন্য ঘটেছে এর ফলে অনেকে ঈশ্বরের অনুগ্রহ পাবে যাতে অনেকে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেয় যাতে তিনি গৌরবান্বিত হন৷ 16 এইজন্য আমরা হতাশ হই না, কারণ যদিও আমাদের এই দেহ বিনাশপ্রাপ্ত হতে থাকছে তবু আমাদের অন্তরাত্মা দিনে দিনে নতুন হয়ে উঠছে৷ 17 বস্তুত আমাদের এই দুঃখ কষ্ট সামযিক মাত্র৷ সামযিক এই কষ্টভোগ আমাদের জীবনে নিয়ে আসবে শ্রেষ্ঠ শাশ্বত মহিমা যা আমাদের দুঃখ কষ্টের সঙ্গে তুলনার য়োগ্য নয়৷ 18 তাই যা দেখা যায় তার দিকে লক্ষ্য না করে বরং যা যা দৃশ্যের অতীত তার ওপরই আমরা দৃষ্টি নিবদ্ধ করি৷ যা যা দৃশ্যমান তা তো অল্পকালস্থাযী: কিন্তু যা যা দৃশ্যাতীত তা চিরস্থাযী৷
1 আমরা জানি পৃথিবীতে আমরা তাঁবুর মত য়ে বাড়িতে বাস করি তা যদি নষ্ট হয়ে যায় তবে আমাদের একটি ঈশ্বরদত্ত বাড়ি আছে, য়ে বাড়ি মানুষের তৈরী নয়, স্বর্গে সে বাড়ি চিরকাল ধরেই আছে৷ 2 বাস্তবিক আমরা এই তাঁবুতে থাকতে থাকতে কাতরভাবে আর্তনাদ করছি৷ আমরা মনেপ্রাণে কামনা করছি য়ে আমাদের স্বর্গীয় আবাস দিয়ে আমাদের ঢেকে দেওয়া হোক৷ 3 কারণ আমরা বিশ্বাস করি য়ে এই পোশাক পরবার পর দেখা যাবে য়ে আমরা উলঙ্গ নই৷ 4 বাস্তবে আমরা এই দেহের মধ্যে থেকে ভারাক্রান্ত হওয়াতে আর্তনাদ করছি৷ আমাদের বর্তমান (দেহরূপ) পোশাকটি ত্যাগ করার ইচ্ছা আমাদের নেই; বরং আমরা চাই য়ে নতুন (স্বর্গীয় দেহরূপ) পোশাকটি পুরাতনের ওপর পরি যাতে নশ্বর জীবন আবৃত হয়ে যায়৷ 5 আর এর জন্য ঈশ্বর আমাদের প্রস্তুত করেছেন৷ এইজন্য তিনি পবিত্র আত্মাকে আমাদের কাছে জামিনস্বরূপ পাঠিয়েছেন৷ 6 আমাদের মনে সর্বদা ভরসা আছে, আমরা জানি যতদিন এই দেহের ঘরে বাস করব ততদিন আমরা প্রভুর কাছ থেকে দূরে থাকব৷ 7 আমরা বিশ্বাসের দ্বারা চলি, বাইরের দৃশ্যের দ্বারা নয়৷ 8 তাই আমি বলি য়ে আমাদের নিশ্চিত ভরসা আছে এবং বাস্তবিক আমরা এই দেহ ত্যাগ করে, আমাদের প্রকৃত আবাস প্রভুর কাছে থাকাই ভাল মনে করি৷ 9 আমাদের লক্ষ্য এই য়ে আমরা এই দেহের ঘরে বাস করি বা না করি, আমরা য়েন ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে চলি৷ 10 কারণ আমাদের সকলকে খ্রীষ্টের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে; আর এই নশ্বর দেহে বাস করার সময় আমরা ভাল বা মন্দ যা কিছু করেছি তার উপযুক্ত প্রতিদান আমাদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে৷ 11 তাই প্রভুর ভয় কি, তা জানাতে পেরে আমরা প্রত্যেক মানুষকে বোঝাচ্ছি য়েন তারা আমাদের কথায় বিশ্বাস করে৷ ঈশ্বর আমাদের অন্তরের কথা সুস্পষ্টভাবে জানেন; আর আমি আশাকরি তোমরাও আমাদের অন্তরের কথা জান৷ 12 আমরা আবার তোমাদের কাছে নিজেদেরকে য়োগ্য পাত্র বলে প্রমাণ দিতে চাইছি না, কিন্তু আমাদের জন্য গর্ব করার সুয়োগ তোমাদের দিচ্ছি; উদ্দেশ্য এইযাঁরা কোন ব্যক্তির হৃদয়ের কথা বিবেচনা না করে দৃশ্যমান বিষয়গুলি নিয়ে গর্ব করে, এইসব লোকদের য়েন তোমরা উচিত জবাব দিতে পার৷ 13 যদি আমরা হতবুদ্ধি হয়ে থাকি তবে তা ঈশ্বরের জন্য এবং যদি আমাদের বিচার বুদ্ধি ঠিক থাকে তবে তা তোমাদের জন্য৷ 14 খ্রীষ্টের ভালবাসা আমাদের নিয়ন্ত্রিত করে, কারণ আমরা নিশ্চিতভাবে বুঝেছি তিনি (খ্রীষ্ট) সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন, তাতে সকলেরই মৃত্যু হল৷ 15 খ্রীষ্ট সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন৷ তাই যাঁরা জীবন পেল, তারা আর নিজেদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং যিনি তাদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন ও পুনরুত্থিত হয়েছেন, তাঁরই উদ্দেশ্যে য়েন জীবনযাপন করে৷ 16 তাই এখন থেকে আমরা আর কাউকেই জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বিচার করি না৷ যদিও আগে খ্রীষ্টকে আমরা জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েই বিচার করেছি তবু এখন আর তা করি না৷ 17 সুতরাং কেউ যদি খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হয়, তবে সে এক নতুন সৃষ্টি হয়ে ওঠে., তার জীবনের পুরানো বিষয়গুলি অতীত হয়ে যায়; দেখ, তার সবই এখন নতুন হয়ে উঠেছে৷ 18 সমস্ত কিছুই ঈশ্বর থেকে এসেছে, যিনি খ্রীষ্টের মাধ্যমে নিজের সাথে আমাদের পুর্নমিলিত করেছেন এবং অন্যদের তাঁর সঙ্গে আবার মিলন করিয়ে দেওয়ার কাজ আমাদের দিয়েছেন৷ 19 য়েমন বলা হয়ে থাকে: ঈশ্বর খ্রীষ্টের মাধ্যমে জগতকে পুনরায় তাঁর নিজের সঙ্গে মিলিত করার কাজ করছিলেন৷ তিনি খ্রীষ্টে মানুষের সকল পাপকে পাপ বলে গন্য না করে মিলনের বার্তা জানাবার ভার আমাদের দিয়েছেন৷ 20 খ্রীষ্টের হয়েই আমরা কথা বলেছি৷ খ্রীষ্টের হয়ে কথা বলতে আমাদের পাঠানো হয়েছে, এইভাবে আমাদের মাধ্যমে ঈশ্বর লোকদের ডাকছেন৷ আমরা খ্রীষ্টের হয়ে তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের সাথে মিলিত হও৷ 21 খ্রীষ্ট কোন পাপ করেন নি; কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্টের ওপর আমাদের পাপের সব দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন, য়েন খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়৷
1 ঈশ্বরের সহকর্মী হিসাবে আমরা তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের য়ে অনুগ্রহ লাভ করেছ তা নিষ্ফল হতে দিও না৷ 2 কারণ ঈশ্বর বলেন,‘আমি উপযুক্ত সময়ে তোমাদের প্রার্থনা শুনলাম এবং পরিত্রাণের দিনে আমি তোমাদের সাহায্য করলাম৷’যিশাইয় 49:8আমি যা বলছি শোন, এখনই সেই ‘উপযুক্ত সময়৷’ আজই ‘পরিত্রাণের দিন৷’ 3 আমরা চেষ্টা করি য়েন আমাদের কোন কাজের দ্বারা কেউ বিঘ্নিত না হয়৷ য়েন আমাদের কাজের কোন রকম নিন্দা কেউ করতে না পারে৷ 4 আমরা সব বিষয়ে নিজেদেরকে ঈশ্বরের সেবক বলে প্রমাণ করি৷ আমরা ধৈর্য়ের সঙ্গে দুঃখভোগ করে সবসময় কষ্ট ও নির্য়াতন সহ্য করেছি৷ 5 আমাদের মারধোর করা হয়েছে, কারাগারে দেওয়া হয়েছে, মারমুখী জনতার সামনে আমাদের দাঁড়াতে হয়েছে৷ কাজ করতে করতে অবসন্ন হয়েছি, কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি, এমনকি অনাহারেও কতদিন কেটেছে৷ 6 এসব সত্ত্বেও আমরা আমাদের জীবনের পবিত্রতা, জ্ঞান, ধৈর্য্য, স্নেহমমতা, পবিত্র আত্মা, প্রকৃত ভালবাসা ও সত্যের প্রচার দ্বারা এবং ঈশ্বরের পরাক্রমের দ্বারা, কি আক্রমণে কি আত্মরক্ষায় উভয় ক্ষেত্রেই সদাচারের অস্ত্র ব্যবহার করে প্রমাণ দিয়েছি য়ে আমরা ঈশ্বরের সেবক৷ 7 8 আমরা সম্মানিত হয়েছি, আবার অসম্মানিত ও হয়েছি৷ আমরা অপমানিত হয়েছি, আবার প্রশংসিত ও হয়েছি৷ আমাদের মিথ্যাবাদী হিসেবে ধরা হয়েছে যদিও আমরা সত্য বলি৷ 9 কিছু লোক আমাদের প্রেরিত বলে স্বীকার করে না; কিন্তু তবুও আমরা স্বীকৃত৷ মনে হচ্ছিল আমরা মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি, কিন্তু দেখ আমরা মরিনি৷ আমাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু মেরে ফেলা হচ্ছে না৷ 10 একদিকে মনে হয় আমরা দুঃখ পাচ্ছি কিন্তু আমরা সদাই আনন্দ করছি৷ মনে হয় আমরা নিঃস্ব, তবু সবকিছুই আমাদের আছে৷ ধরে নেওয়া হয় আমরা দরিদ্র কিন্তু আমরা অপরকে ধনবান করি৷ 11 হে করিন্থীয়গণ, খোলাখুলিভাবেই আমরা তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ 12 তোমাদের প্রতি আমাদের ভালবাসা অটুট আছে; কিন্তু তোমরা তোমাদের ভালবাসা থেকে আমাদের দূরে রেখেছ৷ 13 আমি তোমাদের সন্তান মনে করে বলছি, আমরা য়েমন তোমাদের ভালবেসেছি তোমরাও য়েন তেমনি মনপ্রাণ খুলে আমাদের ভালবাস৷ 14 তোমরা অবিশ্বাসীদের থেকে আলাদা, তাই তাদের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করো না; কারণ ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে কোন য়োগ থাকতে পারে না৷ অন্ধকারের সাথে আলোর কি কোন য়োগায়োগ থাকতে পারে? 15 খ্রীষ্ট এবং দিয়াবলের মধ্যে কি কোন সম্পর্ক থাকতে পারে? অবিশ্বাসীর সাথে বিশ্বাসীরই বা কি সম্পর্ক? 16 ঈশ্বরের মন্দিরের সাথে প্রতিমারই বা কি সম্পর্ক? কারণ আমরাই তো জীবন্ত ঈশ্বরের মন্দির; য়েমন ঈশ্বর বলেছেন:‘আমি তাদের মধ্যে বাস করব এবং তাদের মধ্যে যাতায়াত করব; আমি তাদের ঈশ্বর হবো ও তারা আমার লোক হবে৷’লেবীয় পুস্তক 26:11-12 17 প্রভু বলেন, ‘তোমরা তাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে এস, তাদের থেকে পৃথক হও এবং অশুচি জিনিস স্পর্শ করো না, তাহলে আমি তোমাদের গ্রহণ করব৷’যিশাইয় 52:11 18 ‘আমি তোমাদের পিতা হব ও তোমরা আমার পুত্র কন্যা হবে৷’ একথা সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন৷2 শমুয়েল7:8, 14
1 প্রিয় বন্ধুগণ, এই সমস্ত প্রতিশ্রুতি যখন আমাদের রয়েছে তখন এস, যা কিছু আমাদের দেহ বা আত্মাকে অশুচি করে তার থেকে মুক্ত হয়ে নিজেদের শুচি করি৷ ঈশ্বরের সম্মান করে নিজেদের পূর্ণরূপে পবিত্র করি৷ 2 তোমাদের হৃদয়ে আমাদের স্থান দিও৷ আমরা কারও ক্ষতি করি নি; কাউকে সর্বনাশের পথে নিয়ে যাই নি, কাউকে ঠকাই নি৷ 3 আমি তোমাদের দোষী করতে একথা বলছি তা নয়; আমরা তোমাদের এত ভালবাসি য়ে আমরা মরি তো একসঙ্গে মরব, বাঁচি তো একসঙ্গেই বাঁচব৷ 4 তোমাদের ওপর আমার বড় আস্থা আছে আর তোমাদের নিয়ে আমার খুবই গর্ব৷ আমাদের সমস্ত কষ্টের মধ্যে তোমাদের কাছ থেকে আমি যথেষ্ট উত্সাহ পেয়েছি, তাই আমার মনে বড় আনন্দ৷ 5 যখন আমরা মাকিদনিয়াতে এসেছিলাম, তখনও আমাদের দৈহিকভাবে বিন্দুমাত্র বিশ্রাম হয় নি৷ কারণ আমরা সব দিক থেকে কষ্ট পেয়েছিলাম, বাইরে ছিল ঝগড়াঝাটি ও মনে ছিল ভয়৷ 6 তবুও ঈশ্বর যিনি নিরাশ প্রাণে সান্ত্বনা দেন, তিনি তীতকে নিয়ে এসে আমাদের সান্ত্বনা দিলেন৷ 7 কেবল তীতের আসার জন্য নয়, তোমরা তাকে য়ে সান্ত্বনা দিয়েছ তার জন্যও৷ তিনি আমাদের জানিয়েছেন আমাদের দেখার জন্য তোমাদের কত গভীর আগ্রহ রয়েছে৷ তোমরা যা করেছ তার জন্য তোমরা কি পরিমাণ দুঃখিত এবং আমার জন্য তোমাদের আগ্রহের কথাও তীত আমাদের জানিয়েছেন৷ এর ফলে আমি আরও আনন্দিত হয়েছি৷ 8 যদিও আমার চিঠি তোমাদের কিছু সময়ের জন্য দুঃখ দিয়েছে তবু অনুশোচনা করি না, কারণ প্রথমে অনুশোচনা করলেও আমি দেখছি য়ে সেই চিঠি তোমাদের মনে মাত্র কিছুকালের জন্য ব্যথা দিয়েছে৷ 9 এখন আমি আনন্দ করছি, তোমরা মনে ব্যথা পেয়েছিলে বলে নয়; কিন্তু তোমাদের সেই দুঃখ ও ব্যথা তোমাদের জীবনকে পরিবর্তিত করেছে বলে৷ ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারেই তোমরা দুঃখ পেয়েছিলে, তাই আমাদের দ্বারা তোমাদের কোনরকম ক্ষতি হয় নি; 10 কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দুঃখ মানুষের হৃদয়ে ও জীবনে অনুতাপ আনে আর তা মুক্তির দিকে নিয়ে যায় এবং তাতে আমাদের দুঃখ করার কিছু নেই৷ কিন্তু এই জগতের দেওযা দুঃখ মানুষকে অনন্ত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়৷ 11 দেখ, ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে য়ে দুঃখ তোমাদের হয়েছে, তা তোমাদের কত মঙ্গল করেছে, তোমাদের কত আন্তরিক করে তুলেছে৷ নিজেদের নির্দোষ বলে প্রমাণ করার জন্য তোমাদের কত ইচ্ছা হয়েছিল, তোমাদের মনে কত ক্রোধ ও ভয় জেগেছিল, তোমাদের মনে কত দরদ এসেছিল, অন্যায়ের শাস্তি দেবার জন্য তোমাদের কত ইচ্ছা হয়েছিল৷ সবকিছুতেই তোমরা প্রমাণ করেছ য়ে সে বিষয়ে তোমরা নির্দোষ৷ 12 আমি তোমাদের কাছে চিঠি লিখেছিলাম বটে, কিন্তু য়ে অন্যায় করেছে বা যার ওপর অন্যায় করা হয়েছে তাদের জন্য নয়, বরং তোমাদের লিখেছিলাম যাতে ঈশ্বরের সামনে আমাদের প্রতি তোমাদের য়ে এই আনুগত্য আছে তা উপলদ্ধি করতে পার৷ 13 এইসবের জন্য আমরা উত্সাহিত হয়েছি৷ আমাদের সেই উত্সাহের ওপরে তীতের আনন্দ আমাদের আরও আনন্দিত করেছে৷ তোমাদের সকলের কাছ থেকে তিনি অন্তরে নতুন শক্তি লাভ করেছেন৷ 14 তাঁর কাছে আমি কোন বিষয়ে যদি তোমাদের জন্য গর্ব করে থাকি, তাতে লজ্জিত হই নি; কিন্তু আমরা য়েমন তোমাদের কাছে সবকিছুই সত্যভাবে ব্যক্ত করেছি, তেমনি তীতের কাছে আমাদের সেই গর্বও সত্য বলে প্রমাণ হল৷ 15 তোমরা সকলে তাঁকে কেমন মান্য করেছিলে, কেমন ভয় ও সম্মানের সঙ্গে তাঁকে গ্রহণ করেছিলে, সে সব স্মরণ করে তোমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা আরও বেড়ে গেছে৷ 16 এই জন্য আমি খুশী কারণ আমি তোমাদের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতে পারি৷
1 এখন ভাই ও বোনেরা, মাকিদনিয়ার খ্রীষ্ট মণ্ডলীগুলির মধ্যে ঈশ্বরের অনুগ্রহ য়ে কাজ করেছে তা আমরা তোমাদের জানাচ্ছি৷ 2 যদিও দুঃখ কষ্ট ভোগ করার মধ্য দিয়ে তাদের পরীক্ষা করা হয়েছে এবং যদিও তারা অতি দরিদ্র, তবু তাদের মনে এতই আনন্দ য়ে তারা অন্যকে খোলা হাতে দান করেছে৷ 3 আমি সাক্ষী দিচ্ছি য়ে তারা নিজের ইচ্ছায় যতদূর সাধ্য এমনকি সাধ্যের অতিরিক্ত দান করেছিল৷ 4 তারা আমাদের ঐকান্তিক অনুরোধ জানিয়ে বলেছিল, ঈশ্বরের লোকদের এই সেবার কাজে অংশগ্রহণ করার সুয়োগ য়েন তাদের দেওয়া হয়৷ 5 তারা এমনভাবে দান করেছিল যা আমরা আশাই করি নি৷ তারা ঈশ্বরের ইচ্ছামতো প্রথমে নিজেদের প্রভুর কাছে এবং পরে আমাদের দিয়ে দিল৷ 6 সেইজন্য আমরা তীতকে অনুরোধ করলাম যাতে তিনি এর আগে য়ে কাজ করতে শুরু করেছিলেন, সেই অনুগ্রহের কাজ শেষ করেন৷ 7 সবকিছু য়েমন তোমাদের প্রচুর পরিমাণে আছে; বিশ্বাস, বলার ক্ষমতা, জ্ঞান, সববিষয়ের প্রতি তোমাদের আগ্রহ এবং আমাদের প্রতি ভালবাসা, ঠিক এইভাবে দান করার গুণটিও য়েন তোমাদের প্রচুর পরিমাণে থাকে৷ 8 আমি আদেশ করে বলছি না; কিন্তু অন্য়ের আগ্রহের উদাহরণ দিয়ে তোমাদের ভালবাসা যথার্থ কিনা পরীক্ষা করছি৷ 9 কারণ তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহের কথা জান, তিনি ধনী হয়েও তোমাদের জন্য দরিদ্র হলেন, যাতে তোমরা তাঁর দরিদ্রতায় ধনবান হয়ে উঠতে পার৷ 10 এবিষয়ে আমি আমার পরামর্শ তোমাদের দিচ্ছি কারণ তোমাদের পক্ষে এটা মঙ্গলজনক৷ য়েহেতু গত বছর তোমরাই প্রথম কাজ করতে আরন্ভ করেছিলে, শুধু তাই নয় সেই কাজ করার ইচ্ছাও তোমরাই প্রথমে প্রকাশ করেছিলে৷ 11 তোমরা আগ্রহের সাথে য়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলে, এখন তা সেই একই আগ্রহের সঙ্গে তোমাদের সাধ্যমত শেষ কর৷ 12 কারণ দেবার মতো ইচ্ছা থাকলে তবেই তোমাদের দান গ্রাহ্য় হবে, তোমাদের যা আছে সেই ভিত্তিতে দিলেই তোমাদের দান গ্রাহ্য় হবে; তোমাদের যা নেই সেই অনুযাযী নয়৷ 13 কারণ আমাদের উদ্দেশ্য এই নয় য়ে, অন্য সকলে আরাম করবে আর তোমরা কষ্টে পড়বে, বরং সব কিছুতে য়েন সমতা থাকে৷ 14 বর্তমানে তোমাদের যথেষ্ট রয়েছে, তার থেকে দিয়ে তাদের প্রযোজন মেটাতে পারবে, আবার প্রযোজনে তাদের যা বেশী হবে তা দিতে তোমাদের অভাব মিটবে৷ এইভাবে য়েন সর্বত্র সমতা বজায় থাকে৷ 15 শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে,‘য়ে বেশী কুড়োলো, তার বাড়তি থাকল না; য়ে অল্প কুড়োলো, তার অভাব হল না৷’ যাত্রাপুস্তক 16:18 16 তোমাদের জন্য আমার য়ে আগ্রহ আছে, ঠিক সেই রকম আগ্রহ ঈশ্বর তীতের অন্তরে দিয়েছেন বলে আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 17 তীত য়ে আমাদের অনুরোধ রেখেছেন তাই নয়, তিনি এতই আগ্রহী ছিলেন য়ে নিজের ইচ্ছায় তোমাদের কাছে যাচ্ছেন৷ 18 আমরা তীতের সঙ্গে সেই ভাইকে পাঠাচ্ছি, যিনি সুসমাচার প্রচারের জন্য সমস্ত মণ্ডলীতে প্রশংসিত৷ 19 কেবল তাই নয়, আমাদের সহযাত্রী হিসেবে প্রভুর মহিমার জন্য এই দান নিয়ে যাবার দরুন ও আমাদের সাহায্য করার ইচ্ছাকে প্রমাণ করতে বাস্তবিক মণ্ডলীগুলি তাকে মনোনীত করেছিল৷ 20 আমরা এই দাযিত্ব সম্পর্কে সতর্ক যাতে এই বিপুল অর্থ বিতরণ সম্পর্কে কেউ য়েন আমাদের সমালোচনা না করে৷ 21 কারণ কেবল প্রভুর সামনে নয়, কিন্তু মানুষের দৃষ্টিতে যা ভাল, তাও আমরা লক্ষ্য রাখি৷ 22 আর ওদের সাথে আমাদের ভাইকে পাঠালাম, যাকে আমরা অনেকবার অনেক বিষয়ে পরীক্ষা করে এইসব কাজে উদ্যোগী দেখেছি এবং তোমাদের প্রতি তাঁর এই দৃঢ় বিশ্বাসের জন্য এবার আরও আগ্রহী দেখছি৷ 23 তীতের কথা যদি বলতে হয়, তবে তিনি আমার সহকর্মী ও তোমাদের সাহায্যের কাজে আমার সহকারী৷ আমাদের ভাইদের বিষয় যদি বলতে হয়, তবে বলি তাঁরা মণ্ডলীগুলির প্রতিনিধিত্ব করেন এবং খ্রীষ্টের পক্ষে গৌরব আনেন৷ 24 অতএব তোমাদের ভালবাসার প্রমাণ এবং তোমাদের ওপর আমাদের গর্বের কারণ, এই দুই বিষয়ের প্রমাণ তাদের দেখাও, যাতে সমস্ত মণ্ডলী তা দেখতে পায়৷
1 এখন বুঝতে পারছি য়ে ঈশ্বরের লোকদের সাহায্যের ব্যাপারে তোমাদের কিছু লেখার প্রযোজন নেই৷ 2 কারণ আমি তোমাদের আগ্রহ জানি এবং তোমাদের বিষয়ে মাকিদনিয়ানদের কাছে এই গর্ব করে থাকি য়ে গত বছর থেকে আখায়ার লোকরা অর্থাত্ তোমরা তৈরী হয়ে রয়েছ; আর এই ঘটনা তাদের বেশীর ভাগ লোককে দানের বিষয়ে উত্সাহিত করে তুলেছে, তারাও দিতে চাইছে৷ 3 কিন্তু আমি সেই ভাইদের পাঠাচ্ছি যাতে তোমাদের সম্বন্ধে আমাদের য়ে গর্ব তা বিফল না হয়, য়েন আমি য়েমন তাদের বলেছি সেইমতো তোমরা প্রস্তুত হয়ে থাকো৷ 4 তা না হলে মাকিদনিয়ার কিছু লোক যদি আমার সাথে আসে এবং তোমাদের প্রস্তুত না দেখে, তাহলে এই নিশ্চয়তা বোধ আমাদের ও তোমাদের উভয়ের পক্ষেই লজ্জার বিষয় হবে৷ 5 সেইজন্য আমি ভাইদের এই অনুরোধ করা প্রযোজন মনে করলাম, যাতে তারা আগে তোমাদের কাছে যান এবং দান হিসাবে য়ে অর্থ তোমরা দেবে বলেছিলে, সেই দান সংগ্রহ করে প্রস্তুত থাকতে পারেন৷ সেই দান য়েন স্বেচ্ছাদান হয়, জোর করে আদায় করা চাঁদার টাকা না হয়৷ 6 মনে রেখো, য়ে অল্প পরিমাণে বীজ বোনে, সে অল্প পরিমাণ ফসল কাটবে এবং য়ে যথেষ্ট পরিমাণ বীজ বোনে সে প্রচুর ফসল কাটবে৷ 7 প্রত্যেকে নিজের নিজের অন্তরে য়েমন স্থির করেছে, সেই মতোই দান করুক, মনে দুঃখ পেয়ে অথবা জোর করা হয়েছে বলে নয়, কারণ খুশী মনে যাঁরা দেয়, ঈশ্বর তাদের ভালবাসেন৷ 8 ঈশ্বর তোমাদের সর্বপ্রকার আশীর্বাদ প্রচুর পরিমাণে দিয়ে থাকেন, য়েন সব সময় তোমাদের সব কিছুই বেশী পরিমাণে থাকে এবং য়েন সব রকম ভাল কাজ করার জন্য সর্ব সময়ে তোমাদের ইচ্ছা ও প্রযোজনের অতিরিক্ত সবই থাকে৷ 9 য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে:‘ধার্মিক দরিদ্রকে মুক্ত হস্তে দান করে, তার সেই সত্কাজ চিরস্থাযী৷’গীতসংহিতা 112:9 10 যিনি কৃষককে বোনার জন্য বীজ ও আহারের জন্য খাদ্য় জুগিয়ে থাকেন, তিনি তোমাদের বোনার জন্য আত্মিক বীজ জোগাবেন এবং তার বৃদ্ধিসাধন করবেন৷ তোমাদের দানশীলতা প্রচুর ফসল উত্পন্ন করবে৷ 11 ঈশ্বর তোমাদের সব বিষয়ে সমৃদ্ধ করবেন য়েন তোমরা সব সময়ে মহত্ হও৷ আমাদের মাধ্যমে তোমাদের দাস, যখন অভাবীদের হাতে দেব, তখন তারা আনন্দে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাবে৷ 12 তোমাদের এই দানের ফলে ঈশ্বরের লোকদের শুধু য়ে অভাব মিটবে তা না, বরং এই দান ঈশ্বরের প্রতি অনেক ধন্যবাদের দ্বারা উপচে পড়বে৷ 13 তোমাদের এই কাজ য়ে আনুগত্যের প্রমাণ দেয় তার জন্যে তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করবে, এই আনুগত্য তোমাদের খ্রীষ্টের সুসমাচারের ওপর বিশ্বাস থেকে আসে৷ খোলা হাতে তোমরা য়ে দান তাদের ও অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছ তার জন্য তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করবে৷ 14 তারা যখন তোমাদের জন্য প্রার্থনা করে তখন তোমাদের সাথী হবার ইচ্ছা করবে৷ তোমাদের ওপরে য়ে মহা-অনুগ্রহ ঈশ্বর দিয়েছন, তার কথা মনে করেই তারা এমন ইচ্ছা করবে৷ 15 ঈশ্বরের অপূর্ব অবর্ণনীয় দানের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ৷
1 আমি পৌল নিজের খ্রীষ্টের বিনয় ও সৌজন্যের দোহাই দিয়ে তোমাদের অনুনয় করছি৷ আমি নাকি তোমাদের সামনে বিনম্র কিন্তু পেছনে চিঠিতে তোমাদের কড়া কড়া কথা বলি৷ 2 কিছু কিছু লোক মনে করে য়ে আমরা জাগতিক ভাবে চলি৷ আমি মিনতি করি যখন আমি আসব তখন য়েন আমাকে সেই দৃঢ় সাহস দেখাতে না হয়, য়ে সাহস আমি সেইসব লোকদের প্রতি দেখানো আবশ্যক মনে করি৷ 3 আমরা জগতেই বাস করি কিন্তু জগত্ য়েভাবে যুদ্ধ করে আমরা সেইভাবে করি না৷ 4 জগত্ য়ে যুদ্ধের অস্ত্র ব্যবহার করে, আমরা তার থেকে স্বতন্ত্র যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করি৷ আমাদের যুদ্ধের অস্ত্র ঈশ্বরের পরাক্রম; এই যুদ্ধাস্ত্র শত্রুর সুদৃঢ় ঘাঁটি ধ্বংস করতে পারে৷ লোকদের বাজে বিতর্ক আমরা বিফল করতে পারি৷ 5 য়ে সমস্ত গর্বজনক বিষয় ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞানের বিরুদ্ধে ওঠে, আমরা তাদের প্রত্যেককে ধ্বংস করি এবং সমস্ত চিন্তাকে বশীভূত করে খ্রীষ্টের অনুগত করি৷ 6 যখন তোমরা সম্পূর্ণভাবে আমাদের অনুগত হবে, তখনই আমরা অবাধ্যতার প্রতিটি কাজকে শাস্তি দিতে প্রস্তুত হব৷ 7 তোমাদের সামনের বিষয়গুলির দিকে দেখ, কেউ যদি নিজেদের ওপরে বিশ্বাস রেখে বলে, আমি খ্রীষ্টের লোক, তবে তার আবার একথাও বোঝা উচিত য়ে তার মত আমরাও খ্রীষ্টের লোক৷ 8 একথা ঠিক য়ে প্রভু য়ে কর্ত্তৃত্ব আমাদের দিয়েছেন তাই নিয়ে আমরা বেশ গর্ব করি৷ তোমাদের ব্যথা দিতে নয়, কিন্তু তোমাদের শক্তিশালী করে তুলতেই তিনি আমাদের এই অধিকার দিয়েছেন, আর তা নিয়ে আমরা লজ্জা পাচ্ছি না৷ 9 আমি চিঠিগুলি দিয়ে য়ে তোমাদের ভয় দেখাচ্ছি এরকম মনে করো না৷ 10 কেউ কেউ বলে, ‘তার চিঠিগুলো মনে রেখাপাত করে এবং শক্তিশালী, কিন্তু লোক হিসাবে তিনি দুর্বল এবং তাঁর কথা বলার ধরণ একেবারেই হৃদয়গ্রাহী নয়৷’ 11 এই ধরণের লোক বুঝুক য়ে অনুপস্থিত থাকাকালীন আমাদের চিঠির মধ্যে য়ে শক্তি প্রকাশ পেয়েছে, আমরা যখন তোমাদের সামনে উপস্থিত হব তখন আমাদের কাজেও সেই একই শক্তি দেখতে পাবে৷ 12 কারণ এমন কোন লোকের সাথে আমরা নিজেদের গণনা বা তুলনা করতে সাহস করি না, যাঁরা নিজেরাই নিজেদের উচ্চ প্রশংসা করে থাকে৷ তারা পরস্পরের মধ্যে নিজেদের পরিমাপ করে এবং নিজেদের সাথে নিজেদের তুলনা করে৷ 13 নিজেদের বিষয়ে এতটুকু গর্ব করার অধিকার আমাদের আছে, আমরা তার বেশী করব না, বরং ঈশ্বর আমাদের কর্মক্ষেত্রে য়ে সীমা নিরূপণ করেছেন সেই সীমার মধ্যে থাকব৷ সেই সীমার মধ্যে তোমরা আছো৷ 14 তোমাদের কাছে গিয়েছিলাম বলে তোমাদের নিয়ে আমরা যখন গর্ব করি, তখন সীমার বাইরে কিছু বলি না, কারণ খ্রীষ্টের সুসমাচার নিয়ে আমরাই তোমাদের কাছে প্রথম পৌঁছেছিলাম৷ 15 আমাদের কাজ নিয়ে গর্ব করার য়ে সীমা তা আমরা ছাড়িয়ে যাব না, অন্য়েরা কি করছে তা আমাদের গর্বের বিষয় নয়, পরিবর্তে আমরা আশা করি য়ে তোমাদের বিশ্বাস বাড়বার সাথে সাথে আমরা তোমাদের মধ্যে আরও কাজ করতে পারব৷ 16 তখন আমরা তোমাদের নগর ছাড়িয়েও জায়গায় জায়গায় সুসমাচার প্রচার করতে পারব৷ অপরের এলাকার করা কাজের জন্য আমরা গর্ব করব না৷ 17 তবে, ‘য়ে গর্ব করতে চায় সে প্রভুকে নিয়েই গর্ব করুক৷’ 18 কারণ য়ে মানুষ নিজের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করে সে নয়, কিন্তু প্রভু যার সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করেন সেই ভাল বলে প্রমাণিত হয়৷
1 যখন তোমরা আমার নির্বুদ্ধিতা দেখতে পাও তখন একটু ধৈর্য়্ ধরে আমাকে সহ্য করবে এই আমি চাই৷ দয়া করে আমার প্রতি সহিষ্ণু হও৷ 2 আমি অন্তরে তোমাদের জন্য জ্বালা অনুভব করছি৷ এই অন্তর্জ্বালা স্বয়ং ঈশ্বরের অন্তর থেকে আসে৷ আমি তোমাদেরকে এক বরের সঙ্গে বিয়ে দিতে প্রতিজ্ঞা করেছি, য়েন সতী কন্যা রূপে তোমাদের খ্রীষ্টের কাছে উপহার দিতে পারি৷ 3 কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে দুষ্ট সাপ য়েমন নিজের চাতুরীতে হবাকে ভুলিয়েছিল, সেইরকম তোমাদের মন য়েন কলুষিত না করে এবং খ্রীষ্টের প্রতি তোমাদের য়ে পূর্ণ ও বিশুদ্ধ অনুরাগ আছে তা থেকে তোমাদের য়েন দূরে সরিয়ে নিয়ে না যায়৷ 4 কোন আগন্তুক যদি এমন আর এক যীশুকে প্রচার করে, যাকে আমরা প্রচার করি নি, অথবা আগেই গ্রহণ করেছ এমন আত্মা ছাড়া যদি তোমরা অন্য কোন আত্মা পাও, বা আগে গ্রহণ কর নি এমন কোন অন্য রকমের সুসমাচার পাও তবে তা ভালভাবে সহ্য করো৷ 5 কারণ আমার মনে হয় না য়ে আমি তথাকথিত সেই ‘মহান প্রেরিতদের’ থেকে কোন অংশে পিছিয়ে পড়ে আছি৷ 6 কিন্তু যদিও আমি খুব ভাল বক্তা নই, তবুও আমার জ্ঞান সীমিত নয় এবং তা সবরকমেই পরিষ্কারভাবেই তোমাদের দেখিয়ে দিয়েছি৷ 7 তোমরা য়েন উন্নত হতে পার তাই নিজেকে নত করে আমি কি পাপ করেছি? তোমাদের মধ্যে বিনা পারিশ্রমিকে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করে কি ভুল করেছি? 8 তোমাদের মধ্যে সেবার জন্য অন্য মণ্ডলী থেকে টাকা নিয়ে আমি তাদের লুঠ করেছি; 9 এবং যখন তোমাদের কাছে ছিলাম তখন আমার অভাব হলেও আমি কাউকে ভারগ্রস্ত করি নি, কারণ মাকিদনিয়া থেকে ভাইরা এসে আমার প্রযোজন মেটালেন৷ হ্যাঁ, আমি যাতে কোন বিষয়ে তোমাদের কাছে হাত না পাতি, নিজেকে সেইভাবে রক্ষা করেছি এবং করব৷ 10 সত্যই খ্রীষ্টের সততা যখন নিশ্চিতভাবে আমার মধ্যে আছে, তখন আখায়ার কোন অঞ্চলে কেউ এই গর্ব করা থেকে আমায় বিরত করবে না৷ আমি তোমাদের বোঝা হতে চাই না৷ 11 তার মানে কি এই য়ে আমি তোমাদের ভালবাসি না? ঈশ্বর জানেন আমি তোমাদের ভালবাসি৷ 12 কিন্তু এখন আমি যা করছি, সেই কাজ আরও করব যাতে যাঁরা গর্ব করার সুয়োগ খোঁজে, তাদের বিরত করতে পারি৷ যাঁরা গর্ব করে তাদের য়েন তোমরা আমাদের সমান ভাব; 13 কারণ তারা ভণ্ড প্রেরিত, তারা মিথ্যা বলে৷ তারা প্রবঞ্চক কর্মী, তারা প্রেরিতের ছদ্মবেশ ধরেছে৷ তারা এমনভাব দেখায় যাতে লোকে মনে করে য়ে তারা খ্রীষ্টের প্রেরিত৷ 14 এটা আশ্চর্য নয়, কারণ শয়তান নিজেও নিজেকে দীপ্তিময় স্বর্গদূত হিসাবে দেখাবার জন্য বদলে ফেলে৷ 15 অতএব তার সেবকরাও য়ে ধার্মিকতার সেবকদের বেশ ধারণ করে, এতে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই, পরিণামে তাদের কাজের জন্য তারা শাস্তিভোগ করবে৷ 16 আমি আবার বলছি, কেউ আমাকে মূর্খ মনে না করুক, কিন্তু যদি তোমরা মনে কর, তবে আমাকে মূর্খ বলেই গ্রহণ কর; তাতে আমিও একটু গর্ব করতে পারব৷ 17 আমি নিজেকে জানি তাই আমি গর্ব করি৷ এখন আমি যা বলছি তা প্রভুর আদেশ মত বলছি না কিন্তু এক নির্বোধের মতোই এই গর্ব করছি৷ 18 য়েহেতু অনেকেই জাগতিক বিষয়ে গর্ব করে, তাই আমিও গর্ব করব৷ 19 কারণ তোমরা যাঁরা বুদ্ধিমান তারা নির্বোধ লোকদের প্রতি আনন্দের সাথে সহিষ্ণুতা দেখিয়ে থাক৷ 20 আমি জানি তোমরা সহিষ্ণু, এমন কি তাদের প্রতিও যাঁরা তোমাদের আদেশ করে, শোষণ করে, ফাঁদে ফেলে, নিজেদেরকে তোমাদের থেকে ভাল বলে মনে করে অথবা তোমাদের গালে চড় মারে৷ 21 একথা বলতে আমার লজ্জা বোধ হয় য়ে আমরা তোমাদের প্রতি নিতান্ত ‘দুর্বল’ বলেই দুরকম ব্যবহার করি নি!কিন্তু গর্ব করার মতো যথেষ্ট সাহস যদি কারো থাকে, তবে আমি সাহসী হব ও গর্ব করব৷ আমি মূর্খের মতো কথা বলছি৷ 22 তারা কি ইব্রীয়? আমিও তাই৷ তারা কি ইস্রায়েলী? আমিও তাই৷ তারা কি অব্রাহামের বংশধর? আমিও তাই? 23 তারা কি খ্রীষ্টের সেবক? এমন গর্ব করা পাগলের মত শোনালেও আমি তাদের থেকে অনেক বেশী খ্রীষ্টের সেবা করছি৷ আমি তাদের থেকে অনেক বেশী কঠোর পরিশ্রম করেছি, তাদের থেকে বহুবার বেশী কারাদণ্ড ভোগ করেছি, অনেকবার চাবুকের মার সহ্য করেছি, অনেকবার মৃত্যুমুখে পড়েছি৷ 24 ইহুদীদের কাছ থেকে পাঁচবার উনচল্লিশটি করে চাবুকের মার খেতে হয়েছে৷ 25 তিনবার আমাকে লাঠিপেটা করেছে, একবার আমার ওপর পাথর ছোঁড়া হয়েছে, তিনবার ঝড়ে জাহাজ ডুবিতে আমি কষ্ট পেয়েছি এবং সারা দিনরাত অগাধ জলের মধ্যে কাটিয়েছি৷ 26 স্থলপথে যাত্রাকালে বহুবার বিপদে পড়েছি, নদী থেকে বিপদ এসেছে, কতবার ডাকাতের হাতে, কতবার আমার আপনজন ইহুদী ও অইহুদীদের দ্বারা বিপদগ্রস্ত হয়েছি৷ শহরের মধ্যে মহা বিপদে পড়তে হয়েছে, কখনও গ্রামাঞ্চলে, কখনও বিপদ সঙ্কুল সমুদ্রের মধ্যে এবং ভণ্ড খ্রীষ্টীয়ানদের কাছ থেকে৷ 27 অনেকবার অনাহারে দিন কাটিয়েছি, যথেষ্ট পোশাকের অভাবে প্রচণ্ড শীতে কষ্ট পেয়েছি৷ 28 আর সব সমস্যা যাক, একটি সমস্যা প্রতিদিন আমার ওপরে চেপে রয়েছে, তা হল সমস্ত মণ্ডলীর চিন্তা৷ 29 কেউ দুর্বল হলে আমি কি সেই দুর্বলতার সহভাগী হই না? কেউ বাধা পেয়ে পাপের পথে নেমে গেলে আমি কি রাগে জ্বলে উঠি না? 30 যদি গর্ব করতে হয়, তবে আমার নানা দুর্বলতার বিষয়ে গর্ব করব৷ 31 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতা, যিনি যুগে যুগে প্রশংসিত তিনি জানেন য়ে আমি মিথ্যা বলছি না৷ 32 যখন আমি দম্মেশকে ছিলাম, তখন রাজা আরিতার অধীনস্থ রাজ্যপাল আমাকে বন্দী করার জন্য দম্মেশকীয়দের সেই শহরের চারপাশে পাহারা বসিয়েছিলেন৷ 33 কিন্তু আমার বন্ধুরা শহরের পাঁচিলের একটা ফাঁক দিয়ে একটা ঝুড়িতে করে আমাকে নামিয়ে দিয়েছিলেন, এইভাবে সেই রাজ্যপালের হাত থেকে পালিয়েছিলাম৷
1 গর্ব করা আমার প্রযোজন, যদিও এর দ্বারা কোন লাভই হয় না; কিন্তু প্রভুর দেওয়া নানা দর্শন ও প্রকাশের সম্পর্কে আমাকে বলতে হবে৷ 2 আমি খ্রীষ্টে আশ্রিত একটি লোককে জানি, চোদ্দ বছর আগে যাকে তৃতীয় স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সশরীরে না অশরীরে তা জানি না, ঈশ্বর জানেন৷ 3 এই লোকটির ব্যাপার আমি জানি, সশরীরে কি অশরীরে, তা আমি জানি না, ঈশ্বর জানেন৷ সে স্বর্গোদ্যানে থাকায় এমন সব বিস্ময়কর কথা শুনেছিল, যা নিয়ে মানুষের কথা বলা উচিত নয়৷ 4 5 এমন লোকের জন্য গর্ব করব; কিন্তু নিজের জন্য গর্ব করব না৷ কেবল নানা দুর্বলতার জন্য গর্ব করব৷ 6 যদি আমি নিজের বিষয়ে গর্ব করি তাতেও মূর্খতার পরিচয় দেব না, কারণ আমি সত্যি কথাই বলব৷ তবুও নিজের বিষয়ে দেখছে এবং আমার কথা য়েমন শুনছে, আমাকে য়েন তার থেকে মহান বলে মনে না করে৷ 7 ঐসব অসাধারণ প্রকাশের অভিজ্ঞতার জন্য আমি য়েন গর্ব না করি, সেইজন্য আমার দেহে একটা কাঁটা (কষ্টদায়ক সমস্যা) দেওয়া হল, য়েন শয়তানের এক দূত আমাকে আঘাত করে, যাতে আমি অতি মাত্রায় গর্ব না করি৷ 8 এই ব্যাপারে আমি প্রভুর কাছে তিনবার প্রার্থনা করেছিলাম, যাতে ওর থেকে আমি মুক্তি পাই৷ 9 কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, ‘আমার অনুগ্রহ তোমার জন্য যথেষ্ট; কারণ দুর্বলতার মধ্যে আমার শক্তি সম্পূর্ণতা লাভ করে৷’ এজন্য আমি বরং অত্যধিক আনন্দের সঙ্গে নানা দুর্বলতার গর্ব করব, যাতে খ্রীষ্টের পরাক্রম আমার ওপরে অবস্থান করে৷ 10 যখন কোন সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাই তখনও আমি আনন্দ পাই৷ যখন অন্যরা আমায় নির্য়াতন করে তাতে আমি আনন্দ পাই; যখন আমার সমস্যা থাকে তখনও আমি আনন্দ পাই৷ এইসব আমি খ্রীষ্টের জন্য সহ্য করি, কারণ যখন আমি দুর্বল, তখনই আমি বলবান৷ 11 আমি বোকার মতো কথা বলছি, তোমরাই আমাকে জোর করে বোকা বানালে৷ কারণ আমার প্রশংসা করা তোমাদের উচিত ছিল, যদিও আমি কিছু নই, তবু সেই ‘মহান প্রেরিতদের’ থেকে কোন অংশে ছোট নই৷ 12 আমি য়ে একজন প্রেরিত তার সমস্ত প্রমাণ আমি তোমাদের দিয়েছি এবং প্রকৃত প্রেরিতদের মত ধৈর্য়ের সঙ্গে নানা অলৌকিক চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজ সম্পন্ন করেছি৷ 13 অন্য সমস্ত মণ্ডলী যা পেয়েছে তোমরাও সেই একই জিনিস পেয়েছ৷ তবে তোমরা কোন্ বিষয়ে অন্য মণ্ডলীর থেকে ছোট হলে? কেবল একটি বিষয়ে তোমরা ভিন্ন৷ আমি তোমাদের গলগ্রহ হই নি, এ যদি অন্যায় হয়ে থাকে তবে আমাকে সেই ভুলের জন্য ক্ষমা করো৷ 14 দেখ, এই তৃতীয়বার আমি তোমাদের কাছে য়েতে প্রস্তুত হয়েছি৷ আমি তোমাদের বোঝা হব না, কারণ আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন কিছু চাই না, আমি কেবল তোমাদেরই চাই৷ কারণ বাবা-মায়ের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা ছেলেমেয়েদের কর্তব্য নয়, বরং ছেলেমেয়েদের জন্য বাবা-মায়েরই সঞ্চয় করা কর্তব্য৷ 15 আমার যা কিছু আছে সে সবই তোমাদের অতি আনন্দের সঙ্গে দেব, এমন কি তোমাদের জন্য আমি নিজেকেও ব্যয় করব৷ তোমাদের জন্য আমার ভালবাসা যখন বেড়েই চলেছে, তখন আমার প্রতি তোমাদের ভালবাসা কি কমে যাবে? 16 যাই হোক, একথা ঠিক য়ে আমি তোমাদের উপর খরচের বোঝা হয়ে দাঁড়াই নি; কিন্তু তোমরা বলো আমি চালাক বলে নাকি ছলেবলে তোমাদের ধরেছি৷ 17 আমি যাদের তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম, তাদের মধ্য দিয়ে আমি কি তোমাদের ঠকিয়েছি? তোমরা জান য়ে আমি তা করি নি৷ 18 আমি তীতকে অনুরোধ করেছিলাম এবং তাঁর সাথে অপর এক ভাইকে পাঠিয়েছিলাম৷ তীত কি তোমাদের ঠকিয়েছেন? তোমরা জান য়ে তীত ও আমি, আমরা একই মনোভাব নিয়ে কাজ করি, এবং একই রকম আচরণ করি৷ 19 তোমরা কি মনে কর য়ে, আমরা নিজেদের রক্ষা করতে তোমাদের কাছে এতদিন ধরে এইসব কথা বলেছি৷ না, খ্রীষ্টের অনুগামী হিসেবে আমরা এইসব কথা ঈশ্বরের সামনে থেকেই বলেছি৷ প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের আত্মিকভাবে সবল করার জন্য আমরা এইসব কাজ করেছি৷ 20 কারণ আমার ভয় হয়, পরে আমি তোমাদেরকে য়েরকম দেখতে চাই, গিয়ে সেরকম দেখতে না পাই, এবং তোমরা আমাকে য়েরকম দেখতে চাও না পাছে সেরকম দেখ৷ আমার ভয় হয় য়ে আমি গিয়ে হয়তো তোমাদের মধ্যে ঝগড়া, হিংসা, ক্রোধ, শত্রুতা, গালাগালি, জল্পনা, অহংকার ও বিশৃঙ্খলা দেখতে পাব৷ 21 আমার ভয় হচ্ছে পাছে আমি আবার তোমাদের ওখানে গেলে আমার ঈশ্বর তোমাদের সামনে আমার মাথা নীচু করে দেন৷ যাঁরা আগে পাপ করেছিল, এবং নিজেদের দুষ্টতা, অশুচিতা, য়ৌন পাপ ও অশোভন কাজের বিষয়ে যাদের মনে কোন অনুতাপ নেই, এদের সকলের জন্য আমাকে হয়তো অনেক দুঃখ ও ব্যথা বহন করতে হবে৷
1 এই তৃতীয়বার আমি তোমাদের কাছে যাচ্ছি৷ ‘দুই বা তিন জন সাক্ষীর প্রমাণ দ্বারা প্রত্যেক মামলার নিষ্পত্তি হওয়া উচিত৷’ 2 দ্বিতীয় বার আমি যখন তোমাদের ওখানে গিয়েছিলাম, তখন যাঁরা পাপ জীবনযাপন করছিল তাদের আমি তখনই সতর্ক করে দিয়েছিলাম৷ এখন যখন আমি দূরে তখন আবার তোমাদের সাবধান করছি৷ যখন আমি পুনরায় তোমাদের দেখতে আসব, তখন সেইসব পাপীদের অথবা অন্য য়ে কেউ পাপ করে তাকে রেহাই দেব না৷ 3 কারণ খ্রীষ্ট যিনি আমার মাধ্যমে কথা বলেন, তোমরা তো তাঁরই প্রমাণ চাও৷ তিনি তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে দুর্বল নন, বরং তিনি তোমাদের মধ্যে শক্তিমান৷ 4 কারণ এটা সত্য য়ে তিনি তাঁর দুর্বলতার জন্য ক্রুশের ওপর পেরেক বিদ্ধ হয়েছিলেন; কিন্তু ঈশ্বরের পরাক্রমে তিনি এখন জীবিত৷ এও সত্য য়ে আমরাও তাঁতে (খ্রীষ্টে) দুর্বল, কিন্তু তোমাদের জন্য আমরা ঈশ্বরের পরাক্রম দ্বারা তাঁর সাথে বাস করব৷ 5 নিজেদের পরীক্ষা করে দেখ, তোমাদের বিশ্বাস আছে কি না; প্রমাণের জন্য নিজেদের যাচাই কর৷ তোমরা কি জান না য়ে খ্রীষ্ট যীশু তোমাদের মধ্যে আছেন? কিন্তু এ বিষয়ে যদি তোমাদের অন্তরে সেই প্রমাণ না পাও, তবে খ্রীষ্ট তোমাদের মধ্যে নেই৷ 6 আশাকরি তোমরা একথা স্বীকার করবে য়ে আমরা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি৷ 7 আমরা ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করি, য়েন তোমরা কোন অন্যায় না কর৷ এর অর্থ এই নয় আমরা য়ে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি সেটা স্পষ্ট হোক বরং আমরা ব্যর্থ হয়েছি মনে হলেও য়েন যা ন্যায় তোমরা তাই কর৷ 8 কারণ আমরা সত্যের বিপক্ষে কিছুই করতে পারি না, কেবল সত্যের সপক্ষে করতে পারি৷ 9 তোমরা শক্তিশালী হলে আমরা দুর্বল হলেও আনন্দ করি৷ আমরা প্রার্থনাও করি, য়েন তোমাদের খ্রীষ্টীয় জীবন উত্তরোত্তর শক্তিশালী হয়ে ওঠে৷ 10 এই কারণে যখন আমি তোমাদের থেকে দূরে তখন আমি এই সমস্ত লিখছি; যাতে আমি যখন তোমাদের সাথে থাকব, তখন আমাকে য়েন তোমাদের শাস্তি দিতে বা তিরস্কার করতে না হয়৷ সেই ক্ষমতা তোমাদের ভেঙ্গে ফেলবার জন্য নয়, কিন্তু তোমাদের আত্মিক জীবন গড়ে তোলবার জন্যই প্রভু আমাকে দিয়েছেন৷ 11 আমার ভাই ও বোনেরা, সব শেষে বলি, বিদায়৷ সিদ্ধি লাভের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর, আমি যা বলেছি সেই অনুসারে কাজ কর, একমনা হও, মিলে মিশে শান্তিতে থাক, তাতে প্রেমের ও শান্তির ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে থাকবেন৷ 12 পবিত্র চুম্বন দিয়ে পরস্পরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিও৷ 13 ঈশ্বরের পবিত্র লোকেরা তোমাদের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 14 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ, ঈশ্বরের প্রেম এবং পবিত্র আত্মার সহভাগীতা তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক্৷
1 প্রেরিত পৌলের কাছ থেকে শুভেচ্ছা; প্রেরিতহবার জন্য কোন মানুষ বা মানুষের মাধ্যমে আমাকে মনোনীত করা হয় নি, বরং যীশু খ্রীষ্ট ও পিতা ঈশ্বর যিনি যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত করেছেন তাঁর মাধ্যমেই আমি প্রেরিত পদে মনোনীত হয়েছি৷ 2 আমি পৌল এবং অন্য ভাইরা যাঁরা আমার সাথে আছেন, তাঁরা গালাতীয়ারমণ্ডলীদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছে৷ 3 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ, দয়া ও শান্তি তোমাদের প্রতি বর্তুক৷ 4 যীশু আমাদের পাপের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন, যাতে য়ে মন্দ জগতে আমরা বাস করি তার থেকে য়েন তিনি আমাদের রক্ষা করতে পারেন৷ আমাদের পিতা ঈশ্বর তাই চেয়েছিলেন৷ 5 যুগে যুগে ঈশ্বরের মহিমা হোক্৷ আমেন৷ 6 আমি তোমাদের দেখে আশ্চর্য হচ্ছি য়ে, যিনি খ্রীষ্টের অনুগ্রহের মাধ্যমে তোমাদের আহ্বান করেছিলেন তোমরা সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে কত শীঘ্র সরে গিয়ে এক ভিন্ন সুসমাচারে বিশ্বাস করছ৷ 7 এটা সুসমাচারের কোন ভাষান্তর নয় কিন্তু কিছু লোক তোমাদের বিভ্রান্ত করছে৷ তারা খ্রীষ্টের সুসমাচারকে বিকৃত করতে চাইছে৷ 8 আমরা তোমাদের কাছে য়ে সত্য সুসমাচার প্রচার করেছি তার থেকে ভিন্ন কোন সুসমাচার যদি আমাদের কেউ বা কোন স্বর্গদূত এসেও প্রচার করে, তবে সে অভিশপ্ত হোক্৷ 9 এর আগেও আমরা একথা বলেছি; সেই একই কথা আবার বলছি; তোমরা য়ে সুসমাচার গ্রহণ করেছিলে তদ্ভিন্ন অন্য কোন সুসমাচার যদি কেউ তোমাদের কাছে প্রচার করে তবে এমন ব্যক্তি অভিশপ্ত হোক্৷ 10 তোমাদের কি মনে হয় আমাকে গ্রহণ করার জন্য আমি লোকদের কাছে চেষ্টা চালাচ্ছি? তা নয় বরং একমাত্র ঈশ্বরকেই আমি সন্তুষ্ট করতে চাইছি৷ আমি কি মানুষকে খুশী করতে চাইছি? আমি যদি মানুষকে খুশী করতে চাইতাম তাহলে খ্রীষ্টের দাস হতাম না৷ 11 ভাইরা, আমি চাই তোমরা জান য়ে, য়ে সুসমাচার আমি তোমাদের কাছে প্রচার করেছি তা কোন মানুষের মতানুযাযী নয়৷ 12 কারণ সেই বার্তা আমি কোন মানুষের কাছ থেকে পাই নি; কোন মানুষ আমাকে তা শেখায় নি, বরং যীশু খ্রীষ্টই আমার কাছে তা প্রকাশ করেছেন৷ 13 তোমরা তো শুনেছ আমি আগে কেমন জীবনযাপন করতাম৷ আমি ইহুদী ধর্মমতাবলম্বী ছিলাম৷ আমি নির্মমভাবে ঈশ্বরের মণ্ডলীকে নির্য়াতন করে তা ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছিলাম৷ 14 ইহুদী ধর্মচর্চায় সমসামযিক ও আমার সমবয়সী অন্যান্য ইহুদীদের থেকে আমি অনেক এগিয়েছিলাম, কারণ পূর্বপুরুষদের পরম্পরাগত রীতিনীতি পালনে আমার যথেষ্ট উদ্যোগ ছিল৷ 15 আমার জন্মাবার আগে থেকেই ঈশ্বর আমাকে বেছে নেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাঁর সেবা করার জন্য আমাকে ডাকেন৷ 16 আমি য়েন অইহুদীদের কাছে তাঁর পুত্রের বিষয় সুসমাচার প্রচার করি সেইজন্য ঈশ্বর তাঁর পুত্রের বিষয়ে আমার কাছে প্রকাশ করতে মনস্থ করলেন৷ ঈশ্বর যখন আমাকে ডাকলেন তখন আমি কোন মানুষের সঙ্গে পরামর্শ করি নি, 17 এমন কি আমার আগে যাঁরা প্রেরিত হয়েছিলেন তাদের সঙ্গে দেখা করতে আমি জেরুশালেমে যাই নি; কিন্তু কাল বিলম্ব না করে আমি আরব দেশে চলে গেলাম৷ পরে দম্মেশক শহরে ফিরে গেলাম৷ 18 তারপর তিন বছর বাদে পিতরের সঙ্গে পরিচিত হতে জেরুশালেমে যাই ও পিতরের সঙ্গে আমি পনেরো দিন থাকি৷ 19 সেখানে আমি প্রভুর ভাই যাকোব ছাড়া আর কোন প্রেরিতকে দেখি নি৷ 20 ঈশ্বর জানেন য়ে, য়েসব কথা আমি লিখছি সেগুলি মিথ্যা নয়৷ 21 তারপর আমি সুরিয়ার ও কিলিকিয়ার অঞ্চলগুলিতে চলে যাই৷ 22 এর পূর্বে যিহূদার কোন খ্রীষ্ট মণ্ডলী আমায় ব্যক্তিগতভাবে চিনত না৷ 23 তারা শুধু আমার সম্বন্ধে শুনেছিল, ‘য়ে লোকটি আগে আমাদের নির্য়াতন করত, সে এখন সেই বিশ্বাসের বাণী প্রচার করছে, যা সে পূর্বে ধ্বংস করতে চেয়েছিল৷’ 24 আর তারা আমার কারণে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷
1 তারপর চৌদ্দ বছর পর আমি আবার জেরুশালেমে গেলাম৷ আমি বার্ণবার সঙ্গে গেলাম আর তীতকেও সঙ্গে নিলাম৷ 2 ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রাপ্ত আদেশ অনুসারে আমি সেখানে গেলাম৷ সেখানকার বিশ্বাসীদের নেতৃবর্গের কাছে এক গোপন সভায় অইহুদীদের কাছে য়ে সুসমাচার প্রচার করে থাকি তার ব্যাখ্যা করলাম৷ আমি চেয়েছিলাম য়ে তারা য়েন বুঝতে পারে আমি কি কাজ করছি, য়েন অতীতে য়ে কাজ করেছিলাম ও বর্তমানে আমি যা করছি তা বৃথা না হয়ে থাকে৷ 3 এর ফলস্বরূপ তীত যিনি আমার সঙ্গে ছিলেন, তিনি একজন গ্রীক হওয়া সত্ত্বেও এই নেতৃবর্গ তীতকে সুন্নত করার জন্য জোর করলেন না৷ এইসব সমস্যা নিয়ে কথা বলার দরকার ছিল, কারণ কিছু ভণ্ড বিশ্বাসী গোপনে গুপ্তচরের মতো আমাদের দলে ঢুকে পড়েছিল এবং খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের কতটা স্বাধীনতা আছে তা জানবার চেষ্টা করছিল, যাতে আমাদের তাদের দাস করতে পারে৷ 4 5 সেই ভণ্ড বিশ্বাসী ভাইরা যা চেয়েছিল তার কোন কিছুতেই আমরা মত দিই নি, যাতে সুসমাচার দ্বারা য়ে সত্য প্রকাশিত হয়েছিল তা তোমাদের সাথে থাকে৷ 6 মণ্ডলীতে যাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হচ্ছিল তাদের কাছ থেকেও আমি নতুন কোন কিছু জানতে পারি নি৷ তারা য়েই হোন না কেন তাতে আমার কিছু এসে যায় না৷ ঈশ্বরের কাছে সবাই সমান আর তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন৷ 7 অপরপক্ষে এই গুরুত্বপূর্ণ নেতারা যখন দেখলেন য়ে ঈশ্বর আমাকে অইহুদীদের কাছে সুসমাচার প্রচারের বিশেষ ভার দিয়েছেন, য়েমন পিতরকে ইহুদীদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার ভার দিয়েছেন৷ 8 ইহুদীদের জন্য প্রেরিতের কাজ করতে য়ে ঈশ্বর পিতরকে ক্ষমতা দিয়েছেন, তিনিই আবার আমাকে অইহুদীদের জন্য প্রেরিত করেছেন৷ 9 তাই যাকোব, পিতর ও য়োহন যাদের নেতা হিসাবে খ্যাতি ছিল, তাঁরা বুঝতে পারলেন য়ে ঈশ্বর আমাকে এই বিশেষ অনুগ্রহ দান করেছেন, তাই চিহ্ন হিসাবে বার্ণবা এবং আমার সঙ্গে করমর্দন করে আমাদের সহভাগী হিসেবে গ্রহণ করলেন৷ তাঁরা এই ব্যবস্থায় সম্মত হলেন য়ে, ‘আমরা অর্থাত্ পৌল এবং বার্ণবা অইহুদীদের কাছে প্রচারে যাব; আর তাঁরা অর্থাত্ যাকোব, পিতর ও য়োহন ইহুদীদের কাছে যাবেন৷’ 10 তাঁরা কেবলমাত্র একটি বিষয়ে আমাদের অনুরোধ করলেন, য়েন যাঁরা দরিদ্র তাদের মনে রাখি৷ এ কাজটি করতে আমিও খুব উদগ্রীব ছিলাম৷ 11 কিন্তু যখন পিতর আন্তিয়খিয়ায় এলেন, আমি সরাসরি তাঁর বিরোধিতা করলাম, কারণ তিনি স্পষ্টতই ভুল দিকে ছিলেন৷ 12 আন্তিয়খিয়ায় আসার পর প্রথমে তিনি অইহুদীদের সঙ্গে পানাহার ও মেলামেশা করতেন; কিন্তু যাকোবের কাছে থেকে কিছু ইহুদী সেখানে এলে পিতর অইহুদীদের সঙ্গে পানাহার বন্ধ করে দিলেন৷ তিনি অইহুদীদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে নিজেকে পৃথক রাখলেন৷ তিনি সেই সমস্ত ইহুদীদের কথা মনে করে ভয় পাচ্ছিলেন, যাঁরা মনে করত য়ে সব অইহুদী লোকদের সুন্নত হওয়া দরকার৷ 13 এরপর অন্যান্য অইহুদীরা পিতরের সঙ্গে এই ভণ্ডামিতে এমন মাত্রায় য়োগ দিলেন য়ে এমনকি বার্ণবাও এদের ভণ্ডামির দ্বারা প্রভাবিত হলেন৷ 14 আমি যখন দেখলাম য়ে তাঁরা সুসমাচারের সত্য অনুসারে সোজা পথে চলছেন না, তখন আমি পিতরকে সম্বোধন করে সবার সামনে বললাম: ‘আপনি একজন ইহুদী হয়ে যদি ইহুদীদের রীতিনীতি পালন না করেন, তবে যাঁরা অইহুদী তাদের ইহুদীদের মতো সব কিছু পালন করতে জোর করছেন কেন?’ 15 আমরা জন্মসূত্রে ইহুদী, অইহুদী পাপী নই৷ 16 তবু আমরা জানি য়ে মানুষ ঈশ্বরের সামনে বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয় বরং যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ গণিত হয়, তাই আমরা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করেছি, যাতে আমরা ঈশ্বরের সামনে বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয় বরং খ্রীষ্টে বিশ্বাসী বলেই নির্দোষ গণিত হই৷ কারণ কেউই বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ গণিত হয় না৷ 17 কিন্তু আমরা ইহুদীরা খ্রীষ্টে নির্দোষ গণিত হতে গিয়ে যদি আমাদের অইহুদীদের মত পাপী দেখাই, তবে তার অর্থ কি এই, য়ে খ্রীষ্ট পাপকে উত্সাহিত করেন? কখনই না৷ 18 কারণ যা আমি ভেঙ্গে ফেলেছি তা যদি আবার গঠন করি, তাহলে আমি নিজেকে নিয়ম ভঙ্গকারী হিসাবে প্রমাণ করি৷ 19 বিধি-ব্যবস্থার দিক থেকে আমি মৃত এবং বিধি-ব্যবস্থা হল আমার মৃত্যুর কারণ৷ এটা হয়েছে যাতে আমি ঈশ্বরের জন্য বাঁচি৷ আমি খ্রীষ্টের সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছি৷ 20 সুতরাং আমি আর জীবিত নই, কিন্তু খ্রীষ্টই আমার মধ্যে জীবিত আছেন; আমার দেহের মধ্যে য়ে জীবন আমি এখন যাপন করি, এ কেবল ঈশ্বরের পুত্রের ওপর বিশ্বাসের দ্বারাই করি, যিনি আমাকে ভালবেসেছেন এবং আমার জন্য নিজেকে উত্সর্গ করেছেন৷ 21 ঈশ্বরের অনুগ্রহ আমি প্রত্যাখান করি না, কারণ যদি বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ গণিত হওয়া যায়, তবে খ্রীষ্ট মিথ্যাই প্রাণ দিয়েছিলেন৷
1 ওহে অবুঝ গালাতীয়ের লোকেরা! তোমাদের কে যাদু করেছে? ক্রুশের ওপর যীশু খ্রীষ্টের মৃত্যুর কথা তোমাদের তো স্পষ্ট করেই বোঝানো হয়েছিল৷ 2 কেবল আমার এই কথাটির জবাব দাও: তোমরা কিভাবে পবিত্র আত্মা পেয়েছিলে? বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা কি পেয়েছিলে? না সুসমাচার শুনে ও তাতে বিশ্বাস করাতেই পবিত্র আত্মা পেয়েছিল? 3 তোমরা কি এতই অবোধ য়ে, পবিত্র আত্মায় খ্রীষ্টীয় জীবন শুরু করে এখন তা স্থুল দৈহিক শক্তির ওপর নির্ভর করে শেষ করতে চাও? 4 তোমরা কি বৃথাই এত রকম অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছ? আমি আশা করি তা বৃথা হবে না৷ 5 তোমরা বিধি-ব্যবস্থা পালন করেছিলে বলেই কি ঈশ্বর তোমাদের পবিত্র আত্মা দিয়েছিলেন এবং তোমাদের মধ্যে অলৌকিক কাজ করেছিলেন, না তোমরা সুসমাচার শুনে বিশ্বাস করেছিলে বলে? 6 অব্রাহামের সম্পর্কে শাস্ত্র য়েমন বলে: ‘অব্রাহাম ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করেছিলেন এবং ঈশ্বর তাঁর বিশ্বাসকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন; তার ফলে ঈশ্বরের সাক্ষাতে অব্রাহাম ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছিলেন৷’ 7 তোমাদের জানা ভাল, য়ে যাঁরা বিশ্বাসের পথে চলে তারাই অব্রাহামের প্রকৃত সন্তান৷ 8 পবিত্র শাস্ত্রে এবিষয়ে আগেই লেখা ছিল য়ে, অইহুদী লোকদের ঈশ্বর তাদের বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন করবেন৷ আগে থেকেই এই সুসমাচার অব্রাহামকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল! ‘অব্রাহাম সমস্ত জাতি তোমার মাধ্যমে আশীর্বাদ পাবে৷’ 9 অব্রাহাম বিশ্বাস করে য়েমন আশীর্বাদ পেয়েছেন তেমনি য়ে সমস্ত লোক এখন বিশ্বাস করছে তারাও সেই আশীর্বাদ লাভ করছে৷ 10 যাঁরা ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে বিধি-ব্যবস্থা পালনের ওপর নির্ভর করে, তাদের ওপর অভিশাপ থাকে৷ কারণ শাস্ত্র বলে: ‘বিধি-ব্যবস্থায় য়ে সকল লেখা আছে তার সব কটি য়ে পালন না করে সে শাপগ্রস্ত!’ 11 এখন এটা পরিষ্কার য়ে বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া যায় না৷ কারণ শাস্ত্র বলে: ‘ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাসের জন্যই বাঁচবে৷’ 12 কিন্তু বিধি-ব্যবস্থার সঙ্গে বিশ্বাসের কোন সম্পর্ক নেই, বরং শাস্ত্র বলে, ‘য়ে বিধি-ব্যবস্থা পালন করে, সে তার মধ্য দিয়েই জীবন পাবে৷’ 13 বিধি-ব্যবস্থা আমাদের ওপর য়ে অভিশাপ চাপিয়ে দিয়েছে তার থেকে খ্রীষ্ট আমাদের উদ্ধার করেছেন৷ খ্রীষ্ট আমাদের স্থানে দাঁড়িয়ে নিজের ওপর সেই অভিশাপ গ্রহণ করলেন৷ কারণ শাস্ত্র বলছে: ‘যার দেহ গাছে টাঙ্গানো হয় সে শাপগ্রস্ত৷’ 14 খ্রীষ্ট এই কাজ সম্পন্ন করলেন যাতে য়ে আশীর্বাদ অব্রাহাম লাভ করেছিলেন তা খ্রীষ্টের মাধ্যমে অইহুদীরাও লাভ করে, এবং য়েন বিশ্বাসের দ্বারা আমরা সেই প্রতিশ্রুত আত্মাকে পাই৷ 15 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের কাছে সাধারণ একটি উদাহরণ দিচ্ছি: দুজনের মধ্যে একটা চুক্তির কথা চিন্তা কর৷ সেই চুক্তি একবার বৈধ হয়ে গেলে কেউ তা বাতিল করতে পারে না বা তাতে কোন কিছু য়োগ করতে পারে না৷ 16 ঈশ্বর, অব্রাহাম ও তাঁর বংশধরকে আশীর্বাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ লক্ষ্য কর য়ে এখানে ‘বংশধর’ বলা হয়েছে, ‘বংশধরদের’ নয়, য়েন অনেককে নয় বরং একজনকে অর্থাত্ খ্রীষ্টকে নির্দেশ করা হয়৷ 17 আমি এটাই বলতে চাই য়ে: ঈশ্বর অব্রাহামের সঙ্গেচুক্তি করেছিলেন, আর তার চারশো তিরিশ বছর পরে বিধি-ব্যবস্থা এসেছিল৷ তাই বিধি-ব্যবস্থা এসে পূর্বেই য়ে চুক্তি ঈশ্বরের সাথে অব্রাহামের হয়েছিল তা বাতিল করতে পারে না৷ 18 যদি উত্তরাধিকার বিধি-ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করত তাহলে তা আর প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভরশীল হত না; কিন্তু ঈশ্বর মুক্ত হস্তে এই উত্তরাধিকার অব্রাহামকে তাঁর প্রতিশ্রুতির মধ্যে দিয়েছিলেন৷ 19 তাহলে বিধি-ব্যবস্থা কিসের জন্য? অপরাধ কি এটা বোঝাবার জন্য বিধি-ব্যবস্থা সেই বংশধর (অব্রাহামের) আসা পর্যন্ত য়োগ করা হল, যাকে সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল৷ মানুষের কাছে সেই বিধি-ব্যবস্থা পৌঁছে দিতে স্বর্গদূতরা মোশিকে মধ্যস্তরূপে ব্যবহার করেছিলেন৷ 20 কিন্তু কেবলমাত্র একজন থাকলে কোন মধ্যস্থের দরকার হয় না; আর ঈশ্বর এক৷ 21 তাহলে কি বিধি-ব্যবস্থা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে? নিশ্চয়ই নয়! যদি এমন বিধি-ব্যবস্থা থাকত যা মানুষকে জীবন দান করতে পারে, তবে বিধি-ব্যবস্থা পালন করেই আমরা ধার্মিক হতে পারতাম৷ 22 কিন্তু এ সত্য নয়, কারণ শাস্ত্র দেখাচ্ছে য়ে সকলে পাপের কাছে বন্দী; য়েন লোকেরা বিশ্বাসের মাধ্যমেই সেই প্রতিশ্রুত আশীর্বাদ পেতে পারে৷ যাঁরা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করবে, তাদের উদ্দেশ্যেই এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া রয়েছে৷ 23 এই বিশ্বাস আসার আগে আমরা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে বন্দী ছিলাম; আমাদের কোন স্বাধীনতা ছিল না, য়ে পর্যন্ত না ঈশ্বর আমাদের কাছে বিশ্বাসের সেই কথা জানালেন৷ 24 খ্রীষ্টের কাছে আসার জন্য বিধি-ব্যবস্থাই ছিল আমাদের কঠোর অভিভাবক, য়েন বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক বলে গণিত হই৷ 25 এখন যখন বিশ্বাস আমাদের মধ্যে এসেছে, তখন আমরা আর বিধি-ব্যবস্থার অধীন নই৷ 26 কারণ তোমাদের মধ্যে যাদের খ্রীষ্টে বাপ্তিস্ম হয়েছে, তাদের সবাই খ্রীষ্টকে পরিধান করেছে৷ খ্রীষ্ট যীশুর মাধ্যমে বিশ্বাস দ্বারা তোমরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান৷ 27 28 এখন খ্রীষ্ট যীশুতে যাঁরা আছে তাদের মধ্যে পুরুষ বা স্ত্রীতে কোন ভেদাভেদ নেই, ইহুদী কি গ্রীক, স্বাধীন কি দাসের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা এক৷ 29 তোমরা খ্রীষ্টের, তাই তোমরা অব্রাহামের বংশধর; সুতরাং অব্রাহামের কাছে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তোমরাও তার উত্তরাধিকারী হবে৷
1 আমি তোমাদের একথা বলতে চাইছি, - উত্তরাধিকারী যতদিন শিশু থাকে ততদিন তার সঙ্গে একজন দাসের কোন তফাত্ থাকে না; যদিও সেই শিশু সব কিছুর মালিক৷ 2 কারণ সে যত দিন শিশু অবস্থায় থাকে তাকে অভিভাবক এবং সংসার পরিচালকের কথা অনুযাযী চলতে হয়৷ সাবালক হবার জন্য য়ে বয়স তার পিতা নির্ধারণ করে দেন, সেই বয়সে পৌঁছলে সে স্বাধীন হয়৷ 3 একথা আমাদের পক্ষে একইভাবে প্রয়োজ্য৷ আমরা যখন শিশুদের পর্য়ায়ে ছিলাম, তখন আমরা এই জগতের কতকগুলি প্রাথমিক নিয়ম কানুনের অধীনে ছিলাম, 4 কিন্তু নিরুপিত সময়ে ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন৷ ঈশ্বরের পুত্র একজন স্ত্রীলোকের গর্ভজাত হলেন এবং বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবন কাটালেন, 5 যাতে তিনি বিধি-ব্যবস্থার অধীন সমস্ত লোকদের স্বাধীন করতে পারেন এবং য়েন আমরা সকলে তাঁর পুত্ররূপে স্বীকৃতি পাই৷ 6 তোমরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান, সেইজন্যই তাঁর পুত্রের আত্মাকে তিনি তোমাদের অন্তরে পাঠিয়েছেন৷ সেই আত্মা ডেকে ওঠে, ‘পিতা, পিতা’ বলে৷ 7 তাই তোমরা আগের মতো আর দাস নও কিন্তু ঈশ্বরের পুত্র; আর য়েহেতু তোমরা পুত্র তাই ঈশ্বর তাঁর প্রতিশ্রুত বিষয়গুলি তোমাদের দেবেন৷ 8 অতীতে যখন তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না, তখন তোমরা য়ে সমস্ত দেবতার সেবা করতে, তারা ঈশ্বর নয়৷ 9 কিন্তু তোমরা এখন সত্য ঈশ্বরকে জেনেছ অথবা এটা বলা ভাল য়ে ঈশ্বরই তোমাদের জেনেছেন৷ তাই পূর্বে য়ে সব নিরর্থক ও দুর্বল নিয়ম-কানুন ছিল সেদিকে আবার কেন ফিরছ? তোমরা কি আবার ঐ সকলের দাস হতে চাও? 10 তোমরা কেবল বিশেষ বিশেষ দিন, মাস, ঋতু ও বছর পালন করছ৷ 11 তোমাদের দেখে আমার ভয় হয় য়ে, তোমাদের মধ্যে হয়তো আমি বৃথাই পরিশ্রম করেছি৷ 12 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের মতো ছিলাম, তাই মিনতি করি তোমরা আমার মতো হও৷ তোমরা আমার সঙ্গে কোন খারাপ ব্যবহার কর নি৷ 13 তোমরা তো জান, আমি অসুস্থ ছিলাম বলে প্রথমেই তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করি৷ 14 যদিও আমার অসুস্থতা তোমাদের সবার কাছে এক পরীক্ষাস্বরূপ হয়েছিল, তবু তোমরা এমনভাবে আমাকে গ্রহণ করেছিলে য়েন আমি ঈশ্বর হতে আগত স্বর্গদূত, য়েন স্বয়ং যীশু খ্রীষ্ট৷ 15 এখন তোমাদের সেই আনন্দ কোথায়? আমি তোমাদের সম্বন্ধে এই সাক্ষ্য দিতে পারি য়ে তখন সন্ভব হলে তোমরা আমার জন্য নিজের নিজের চোখ উপড়ে আমাকে দিতে দ্বিধা করতে না৷ 16 এখন তোমাদের কাছে সত্য বলছি বলে কি আমি তোমাদের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছি? 17 সেই লোকরা তোমাদের প্রতি আগ্রহী হয়েছে, কিন্তু তা কোন ভাল উদ্দেশ্যে নয়৷ তারা তোমাদের কাছ থেকে আমাদের আলাদা করতে চায়, য়েন তোমরা তাদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ কর৷ 18 অবশ্য আগ্রহ দেখানো ভাল কেবল যদি সত্ উদ্দেশ্যে তা করা হয়৷ আমি যখন তোমাদের মধ্যে উপস্থিত থাকি কেবল তখনই নয় বরং সবসময়েই তা থাকা ভাল৷ 19 হে আমার প্রিয় সন্তানরা, তোমাদের জন্য আমি আর একবার প্রসব যন্ত্রণা ভোগ করছি৷ তোমাদের নিয়ে আমাকে এই যন্ত্রণা ভোগ করতেই হবে যতদিন পর্যন্ত না তোমরা খ্রীষ্টের মতো হয়ে ওঠো৷ 20 এখন তোমাদের কাছে য়েতে আমার খুব ইচ্ছা করছে, তাহলে ভিন্নভাবে এসব নিয়ে আলোচনা করতে পারতাম৷ আমি জানি না তোমাদের নিয়ে আমি কি করব৷ 21 আমাকে বলতো, তোমাদের মধ্যে কে মোশির বিধি-ব্যবস্থার অধীন থাকতে চায়? তোমরা কি জান না বিধি-ব্যবস্থা কি বলে? 22 শাস্ত্র বলছে য়ে অব্রাহামের দুটি পুত্র ছিল, একটি পুত্রের মা ছিল দাসী স্ত্রী, অপর পুত্রের মা ছিল স্বাধীন স্ত্রী৷ 23 দাসী স্ত্রীর গর্ভে অব্রাহামের য়ে সন্তান জন্মেছিল তার জন্ম স্বাভাবিকভাবেই হয়েছিল, কিন্তু স্বাধীন স্ত্রীর গর্ভে অব্রাহামের য়ে সন্তান জন্মেছিল, সে অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির ফলেই জন্মেছিল৷ 24 এই বিষয়গুলি রূপকের মতো ব্যাখ্যা করা যায়৷ এই দুই মহিলা দুটি চুক্তির প্রতিনিধিত্ব করে, একটি চুক্তি য়েটা সীনয় পর্বত থেকে এসেছিল, সেটা একদল লোকের জন্ম দিয়েছিল দাসত্বের জন্যে৷ য়ে মাতার নাম হাগার, সে এই চুক্তির সঙ্গে তুলনীয়৷ 25 হাগার হলেন আরবের সীনয় পর্বতের মতো৷ তিনি বর্তমান ইহুদীদের জেরুশালেমের প্রতিরূপ, কারণ সেই জেরুশালেম তার লোকদের সাথে দাসত্বের বন্ধনে বদ্ধ৷ 26 কিন্তু স্বর্গীয় জেরুশালেম স্বাধীন মহিলা স্বরূপ৷ সেই জেরুশালেম আমাদের মাতৃসম৷ 27 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:‘হে বন্ধ্যা নারী, তোমরা যাঁরা সন্তানের জন্ম দাও নি! তোমরা আনন্দ কর, উল্লসিত হও! তোমরা যাঁরা কখনই প্রসব যন্ত্রণা ভোগ কর নি; তোমরা উল্লাস কর, কারণ স্বামীর সহিত বসবাসকারী স্ত্রীর চাইতে নিঃসঙ্গ স্ত্রীর অনেক বেশী সন্তান হবে৷’যিশাইয় 54:1 28 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরাও সেই ইসহাকের মতো প্রতিশ্রুতির সন্তান৷ কিন্তু ঠিক এখনকার মতোই তখনও য়ে পুত্র স্বাভাবিকভাবে জন্মেছিল, সে অন্য পুত্রকে অর্থাত্ পবিত্র আত্মার শক্তিতে যার জন্ম হয়েছিল তাকে নির্য়াতন করত৷ 29 30 কিন্তু শাস্ত্র কি বলে? ‘দাসী স্ত্রী ও তার পুত্রকে তাড়িয়ে দাও!কারণ দাসীর পুত্র স্বাধীন স্ত্রীর পুত্রের সাথে কিছুরই উত্তরাধিকারী হবে না৷’ 31 তাই বলি আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা সেই দাসীর সন্তান নই, আমরা স্বাধীন স্ত্রীর সন্তান৷
1 খ্রীষ্ট আমাদের স্বাধীন করেছেন, য়েন আমরা স্বাধীনভাবে থাকতে পারি; তাই শক্ত হয়ে দাঁড়াও, দাসত্বে ফিরে য়েও না৷ 2 শোন! আমি পৌল বলছি৷ যদি তোমরা সুন্নতের মাধ্যমে আবার বিধি-ব্যবস্থায় ফিরে যাও, তবে তোমরা খ্রীষ্টেতে লাভবান হবে না৷ 3 আবার আমি প্রত্যেক মানুষকে সতর্ক করে দিচ্ছি৷ তোমরা যদি সুন্নত করাতে চাও, তবে বিধি-ব্যবস্থার সবটাই তোমাদের পালন করতে হবে৷ 4 তোমরা যাঁরা বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ গণিত হতে চেষ্টা করছ, তারা খ্রীষ্টের কাছ থেকে নিজেদের আলাদা করেছ এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়েছ৷ 5 কিন্তু আমরা বিশ্বাসের দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ বলে গণিত হবার জন্য অধীর আগ্রহে আত্মায় অপেক্ষা করছি৷ 6 কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে যুক্ত থাকলে সুন্নত হওয়া বা না হওয়া এ প্রশ্ন মূল্যহীন; কিন্তু দরকারি বিষয় হল বিশ্বাস, য়ে বিশ্বাস ভালবাসার মধ্য দিয়ে কাজ করে৷ 7 তোমরা বেশ ভালই দৌড়োচ্ছিলে, তাহলে সত্যের বাধ্য হয়ে চলতে কে তোমাদের বাধা দিল? 8 যিনি তোমাদের আহ্বান করেছেন, সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে এই ধরণের প্ররোচনা আসে নি৷ 9 সাবধান হও! ‘সামান্য একটু খামির গোটা ময়দার তালকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলে!’ 10 তোমাদের জন্য প্রভুতে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে য়ে তোমরা আমার শিক্ষা ছাড়া ভিন্ন কোন শিক্ষার দিকে ফিরবে না; কিন্তু য়ে লোক তোমাদের বিরক্ত করছে, সে য়েই হোক না কেন, শাস্তি সে পাবেই৷ 11 আমার ভাই ও বোনেরা, যদি আমি এখনও সুন্নতের প্রযোজন সম্বন্ধে শিক্ষা নিই, তবে আমি এখনও এতো নির্য়াতন ভোগ করছি কেন? এবং আমি সুন্নতের প্রযোজন সম্বন্ধে যদি এখনও বলি তাহলে ক্রুশের কথা বলতে কোন সমস্যাই হত না৷ 12 যাঁরা তোমাদের অস্থির করে তুলছে, আমি চাই তারা য়েন নিজেদের ছিন্নাঙ্গও করে৷ 13 আমার ভাই ও বোনেরা, স্বাধীন মানুষ হবার জন্যই ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন, কেবল দেখ তোমাদের পাপ প্রবৃত্তিকে তৃপ্তি দিয়ে সেই স্বাধীনতার সুয়োগ নিও না, বরং প্রেমে একে অপরের দাস হও৷ 14 য়েহেতু সমস্ত বিধি-ব্যবস্থাকে এক করলে এটাই দাঁড়ায়: ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত করে ভালবাস৷’ 15 কিন্তু তোমরা যদি নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি, ছেঁড়াছেড়ি কর, তবে সাবধান! য়েন তোমরা একে অপরের দ্বারা ধ্বংস না হও৷ 16 তাই আমি বলি য়ে, তোমরা সেই আত্মার পরিচালনায় চল, তাহলে তোমরা আর তোমাদের পাপ প্রকৃতির ইচ্ছা পূর্ণ করবে না৷ 17 কারণ আমাদের পাপ প্রকৃতি যা চায়, তা আত্মার বিরুদ্ধে এবং আত্মা যা চায় তা পাপ প্রকৃতির ইচ্ছার বিরুদ্ধে৷ এরা পরস্পরের বিরোধী, ফলে তোমরা যা চাও তা করতে পার না৷ 18 কিন্তু তোমরা যদি আত্মা দ্বারা পরিচালিত হও তবে তোমরা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে নও৷ 19 পাপ প্রবৃত্তির কাজগুলি স্পষ্ট; সেগুলি হল ব্যভিচার, অশুচিতা, স্বেচ্ছাচারিতা, 20 প্রতিমা পূজা, ডাইনি বিদ্যা, ঘৃণা, স্বার্থপরতা, হিংসা, ক্রোধ, নিজেদের মধ্যে বিতর্ক, মতভেদ, দলাদলি, ঈর্ষা, 21 মাতলামি, লাম্পট্য আর একই ধরণের অন্য অপরাধ৷ এর বিরুদ্ধে তোমাদের সাবধান করে দিচ্ছি য়েমন এর আগেও করেছি, যাঁরা এইসব কুকাজ করবে তাদের ঈশ্বরের রাজ্যে জায়গা হবে না৷ 22 কিন্তু আত্মার ফল হল ভালবাসা, আনন্দ, শান্তি, ধৈর্য্য, দয়া, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা ও আত্মসংযম৷ 23 এই সবের বিরুদ্ধে কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই৷ 24 যাঁরা যীশু খ্রীষ্টে রয়েছে, তারা তাদের পাপ প্রকৃতিকে কামনা বাসনা সমেত ক্রুশে বিদ্ধ করেছে, অর্থাত্ তাদের পুরানো জীবনের সব মন্দ লালসা ও প্রবৃত্তি ত্যাগ করেছে৷ 25 সুতরাং আত্মাই যখন আমাদের নতুন জীবনের উত্স তখন এস আমরা আত্মার অধীনে চলি৷ 26 এস আমরা য়েন অযথা অহঙ্কার না করি, পরস্পরকে জ্বালাতন ও হিংসা না করি৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি হঠাত্ পাপে পড়ে তবে তোমরা যাঁরা আত্মিক ভাবাপন্ন তারা অবশ্যই তাকে ঠিক পথে আনতে সাহায্য করবে৷ একাজ অত্যন্ত নম্রভাবে করতে হবে; কিন্তু তোমরা নিজেরাও সাবধানে থেকো, পাছে তোমরাও পরীক্ষায় পড়৷ 2 তোমরা একে অপরের ভার বহন কর, এই রকম করলে বাস্তবে খ্রীষ্টের বিধি-ব্যবস্থাই পালন করবে৷ 3 কোন ব্যক্তি যদি প্রকৃতপক্ষে ভাল না হয়েও নিজেকে অন্যদের থেকে ভাল মনে করে তাহলে সে নিজেকে প্রতারণা করছে৷ 4 অপর লোকের সঙ্গে নিজের তুলনা না করে প্রত্যেকের উচিত নিজের কাজ যাচাই করে দেখা, তবে সে যা করছে তাই নিয়ে গর্ব করতে পারবে৷ 5 কারণ প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নিজের দাযিত্ব নিতে হবে৷ 6 য়ে ব্যক্তি শিক্ষকের কাছ থেকে ঈশ্বরের বার্তার বিষয়ে শিক্ষা লাভ করে, তার উচিত সেই শিক্ষককে তার সমস্ত উত্তম বিষয়ের সহভাগী করে প্রতিদান দেওয়া৷কারণ প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নিজের দাযিত্ব নিতে হবে৷ 7 তোমরা নিজেদের বোকা বানিও না৷ ঈশ্বরকে ঠকানো যায় না৷ য়েমন বুনবে, তেমন কাটবে৷ 8 য়ে নিজ পাপ প্রকৃতির বীজ রোপন করে সে তার থেকে সংগ্রহ করবে৷ কিন্তু য়ে পবিত্র আত্মার বীজ বুনবে সে পবিত্র আত্মার কাছ থেকে অনন্ত জীবন পাবে৷ 9 ভাল কাজ করতে করতে আমরা য়েন ক্লান্ত না হয়ে পড়ি, কারণ নিরুপিত সময়ে আমরা ফসল রূপে অনন্ত জীবন পাব৷ হাল ছাড়লে চলবে না৷ 10 সুয়োগ পেলে আমাদের সব লোকের প্রতি ভাল কাজ করা উচিত, বিশেষ করে বিশ্বাসীর গৃহের পরিজনদের প্রতি৷ 11 দেখ কত বড় বড় অক্ষরে নিজের হাতে আমি এই চূড়ান্ত কথাগুলি লিখছি৷ 12 যাঁরা তোমাদের সুন্নত করার চেষ্টায় আছে, তাদের উদ্দেশ্য অন্যদের কাছে নাম কেনার৷ তারা এটা করে যাতে খ্রীষ্টের ক্রুশের জন্য তারা অত্যাচারিত না হয়৷ 13 যাঁরা সুন্নত করেছে তারা নিজেরাও বিধি-ব্যবস্থা ঠিক মতো পালন করে না অথচ তারাই তোমাদের সুন্নত করাতে চাইছে; উদ্দেশ্য, তোমাদের সুন্নত করানোর মাধ্যমে বশ করতে পারলে এই কাজ নিয়ে তারা গর্ব করার সুয়োগ পাবে৷ 14 শুধু আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ক্রুশ ছাড়া আমার গর্ব করার মতো কিছুই নেই৷ যীশুর ক্রুশীয় মৃত্যুর দ্বারা আমি জগতের কাছে ক্রুশবিদ্ধ আর জগত আমার কাছে ক্রুশবিদ্ধ৷ 15 কারো সুন্নত করা হল কি হল না সেটা বড় বিষয় নয় কিন্তু এটা জরুরী য়ে এক নতুন সৃষ্টি হোক৷ 16 ঈশ্বরের লোকেরা যাঁরাই এই নিয়ম মানে তাদের ওপর শান্তি ও দয়া বর্ষিত হোক্৷ 17 চিঠি লেখা শেষ করার আগে আমার অনুরোধ, য়েন কেউ আর আমাকে কষ্ট না দেয়, কারণ ইতিমধ্যেই আমি আমার দেহে খ্রীষ্টের ক্ষত চিহ্ন বহন করছি৷ 18 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি প্রার্থনা করি য়ে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের আত্মার মধ্যে বিরাজ করুক৷ আমেন৷
1 2 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের সহবর্তী হোক৷ 3 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতার প্রশংসা হোক্৷ তিনি খ্রীষ্টে আমাদের স্বর্গীয় স্থানে সমস্ত আত্মিক আশীর্বাদে পূর্ণ করেছেন৷ 4 জগত্ সৃষ্টির পূর্বে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র, নির্দোষ এবং প্রেমময় লোক হবার জন্য আমাদের খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে বেছে নিলেন৷ 5 জগত্ সৃষ্টির পূর্বেই ঈশ্বর ঠিক করেছিলেন য়ে আমরা খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর সন্তান হব৷ এ কাজ ঈশ্বর নিজেই সম্পন্ন করতে চেয়েছিলেন, আর তাতেই তিনি খুশী হলেন৷ 6 ঈশ্বরের এই মহান অনুগ্রহ তাঁর প্রশংসার কারণ হয়ে উঠেছে; আর এই অনুগ্রহ ঈশ্বর আমাদের মুক্তহস্তে দান করেছেন৷ তিনি যাকে ভালবাসেন সেই খ্রীষ্টের মাধ্যমেই এই অনুগ্রহ ঈশ্বর আমাদের মুক্তহস্তে দান করেছেন৷ 7 খ্রীষ্টের রক্তের দ্বারা আমরা মুক্ত হয়েছি৷ ঈশ্বরের মহানুগ্রহের ফলে আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা পেয়েছে৷ 8 সেই অনুগ্রহ ঈশ্বর আমাদের পর্য়াপ্ত পরিমাণে দিয়েছেন৷ সমস্ত দান ও অন্তর্দৃষ্টির সাথে, 9 নিজেই তাঁর গোপন পরিকল্পনা আমাদের কাছে প্রকাশ করেছেন, আর এই ছিল ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং তিনি তা খ্রীষ্টের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে পরিকল্পনা করলেন৷ 10 তাঁর নিরূপিত সময়ে ঈশ্বর এই পরিকল্পনা করেছিলেন য়ে স্বর্গ ও মর্ত্যের সব কিছুই খ্রীষ্টের সঙ্গে সংযুক্ত হবে; আর খ্রীষ্ট হবেন সবার মস্তক৷ 11 ঈশ্বরের লোক হবার জন্য আমরা খ্রীষ্টে মনোনীত হয়েছিলাম৷ ঈশ্বর পূর্বেই স্থির করেছিলেন য়ে আমরা তাঁর আপনজন হব, তাই ছিল ঈশ্বরের অভিপ্রায়৷ ঈশ্বর যা চান বা যা করার সিদ্ধান্ত নেন, তাঁর ইচ্ছানুসারে তা সম্পন্ন করেন৷ 12 খ্রীষ্টের ওপর যাঁরা প্রত্যাশা করেছে তাদের মধ্যে আমরা অগ্রণী৷ আমাদের মনোনীত করা হয়েছে য়েন আমরা ঈশ্বরের মহিমার প্রশংসা করি৷ 13 খ্রীষ্টেতে তোমরা তোমাদের পরিত্রাণের জন্য সেই সুসমাচারের সত্য বার্তা শুনেছিলে এবং তোমরা খ্রীষ্টে বিশ্বাস করেছিলে; আর তোমাদের পবিত্র আত্মা দান করে ঈশ্বর তোমাদের ওপর তাঁর নিজের মালিকানার ছাপ দিয়েছেন৷ 14 ঈশ্বর তাঁর নিজস্ব লোকদের যা কিছু দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেই পবিত্র আত্মা হল তার জামিনস্বরূপ, আর যাঁরা ঈশ্বরের লোক তারা এর মাধ্যমে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে৷ এ সবকিছুর একমাত্র লক্ষ্য হল তাঁর মহিমায় প্রশংসা য়োগ করা৷ 15 এইজন্য আমি আমার প্রার্থনায় তোমাদের সর্বদা স্মরণ করি ও তোমাদের জন্য সর্বদা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই৷ আমি প্রভু যীশুর ওপর তোমাদের বিশ্বাসের কথাও সমস্ত ঈশ্বরের লোকদের প্রতি তোমাদের ভালবাসার কথা শুনেছি৷ 16 17 আমি ঈশ্বরের কাছে তোমাদের জন্য নিরন্তর প্রার্থনা করছি য়েন, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মহিমাময় পিতা তোমাদের সেই আত্মা দেন, যা তোমাদের বিজ্ঞ করবে এবং ঈশ্বরকে তোমাদের কাছে প্রকাশ করবে যাতে তোমরা তাঁকে ভালভাবে জানতে পার৷ 18 আমি প্রার্থনা করছি য়েন তোমরা আপন আপন হৃদয়ে ঐশ্বরিক জ্ঞান লাভ করতে পার, তাহলে ভবিষ্যতে কি প্রত্যাশার জন্য ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন তা তোমরা জানতে পারবে৷ য়ে আশীর্বাদ ঈশ্বর তাঁর পবিত্র লোকদের দেবার জন্য স্থির করেছেন তা কত সম্পদশালী ও প্রতাপযুক্ত তা তোমরা বুঝতে পারবে৷ 19 আমরা যাঁরা বিশ্বাসী, আমাদের মধ্যে ঈশ্বরের য়ে মহাশক্তি কাজ করছে তাও তোমরা জানতে পারবে৷ 20 সেই মহাশক্তি দ্বারা ঈশ্বর খ্রীষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন ও তাঁর ডানপাশে স্বর্গীয় স্থানে বসিয়েছেন৷ 21 ঈশ্বর খ্রীষ্টকে সমস্ত রাজা, মহারাজা, শাসনকর্তা ও মহান নেতাদের থেকে এবং প্রত্যেক শীর্ষ স্থানীয় শক্তির উর্দ্ধে খ্রীষ্টকে স্থাপন করেছেন, কেবল এই কালে নয় আগামীকালেও৷ 22 ঈশ্বর সবকিছুই খ্রীষ্টের চরণের নীচে স্থাপন করেছেন৷ তাঁকেই সকলের ওপরে মস্তক স্বরূপ করে মণ্ডলীকে দান করেছেন৷ 23 মণ্ডলী হল খ্রীষ্টের দেহ; আর তাঁর পরিপূর্ণতা সব কিছুই সমস্ত দিকে দিয়ে পূর্ণ করে৷
1 অতীতে পাপের দরুন ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপরাধের দরুন তোমাদের আত্মিক জীবন মৃত ছিল৷ 2 হ্যাঁ, অতীতে ঐসব পাপ নিয়ে তোমরা জীবনযাপন করতে৷ জগত্ য়েভাবে চলে তোমরা সেভাবেই চলতে৷ তোমরা আকাশের মন্দ শক্তির অধিপতির অনুসরণকারী ছিলে৷ সেই একই আত্মা এখনও যাঁরা ঈশ্বরের অবাধ্য তাদের মধ্যে ক্রিয়াশীল৷ 3 অতীতে আমরা সকলে ঐ লোকদের মত চলতাম৷ আমাদের কুপ্রকৃতির লালসাকে চরিতার্থ করতে চেষ্টা করতাম৷ আমরা আমাদের দেহ ও মনের অভিলাষ অনুযাযী চলতাম৷ আমাদের য়ে অবস্থা ছিল তার দরুন ঐশ্বরিক ক্রোধ আমাদের ওপর নেমে আসতে পারত, কারণ আমরা অন্য আর পাঁচজনের মতোই ছিলাম৷ 4 কিন্তু ঈশ্বরের করুণা অসীম৷ তিনি তাঁর মহান ভালবাসায় আমাদের কতো ভালবাসেন৷ 5 ঈশ্বরের বিরুদ্ধে য়েসব অন্যায় কাজ করেছিলাম তার ফলেই আমরা আত্মিকভাবে মৃত ছিলাম; কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্ট যীশুর সাথে আমাদের নতুন জীবন দিলেন৷ তোমরা ঈশ্বরের অনুগ্রহেই উদ্ধার পেয়েছ৷ 6 ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে আমাদের জীবিত করে স্বর্গীয়স্থানে তাঁর পাশে বসতে আসন দিয়েছেন৷ 7 ঈশ্বর এই কাজ করলেন য়েন আগামী যুগপর্য়ায়ে তাঁর অতুলনীয় মহানুগ্রহ সকলের প্রতি দেখাতে পারেন৷ খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে এই অনুগ্রহ তিনি প্রকাশ করেছেন৷ 8 কারণ ঈশ্বরের অনুগ্রহের দ্বারা বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তোমরা উদ্ধার পেয়েছ৷ বিশ্বাস করাতেই তোমরা সেই অনুগ্রহ পেয়েছ৷ তোমরা নিজেরা নিজেদের উদ্ধার কর নি; কিন্তু তা ঈশ্বরের দানরূপে পেয়েছ৷ 9 তোমাদের নিজেদের কর্মের ফল হিসেবে তোমরা উদ্ধার পাও নি, তাই কেউই গর্ব করে বলতে পারে না য়ে সে তার নিজের দ্বারা উদ্ধার পেয়েছে৷ 10 কারণ ঈশ্বরই আমাদের নির্মাণ করেছেন৷ খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বর আমাদের নতুন সৃষ্টি করেছেন য়েন আমরা সর্বপ্রকার সত্ কাজ করি৷ এইসব সত্ কর্ম ঈশ্বর পূর্বেই আমাদের জন্য তৈরী করে রেখেছিলেন যাতে আমরা সেই সত্ কাজ করে জীবন কাটাতে পারি৷ 11 তোমরা অইহুদী, পরজাতিরূপে জন্মেছিলে৷ তোমরাই সেই লোক যাদের সুন্নত ইহুদীরা বলে ‘অসুন্নত’৷ তাদের সুন্নত হওয়া কেবল এক প্রক্রিয়া, যা দেহের ওপর মানুষের হাত দ্বারা করা হয়৷ 12 মনে রেখো অতীতে সেই সময় তোমরা খ্রীষ্ট থেকে দূরে ছিলে৷ তোমরা ইস্রায়েলের নাগরিক ছিলে না৷ ঈশ্বর তাঁর প্রজাদের সঙ্গে য়ে চুক্তিগুলি করেছিলেন, তোমরা সেইসব প্রতিশ্রুতিযুক্ত চুক্তিগুলির বাইরে ছিলে৷ তোমাদের প্রত্যাশা ছিল না আর তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না৷ 13 এক সময় তোমরা ঈশ্বর থেকে বহুদূরে ছিলে; কিন্তু এখন খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা নিকটবর্তী হয়েছ৷ 14 খ্রীষ্টই আমাদের শান্তির উত্স৷ ইহুদী ও অইহুদীদের মধ্যে য়ে শত্রুভাব প্রাচীরের মত ব্যবধান সৃষ্টি করেছিল, খ্রীষ্ট নিজ দেহ উত্সর্গ করে ঘৃণা ও ব্যবধানের সেই প্রাচীর ভেঙ্গে দিয়েছেন৷ 15 ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থায় অনেক আদেশ নিয়মকানুন ছিল; কিন্তু খ্রীষ্ট সেই বিধি-ব্যবস্থা লোপ করেছেন৷ খ্রীষ্টের উদ্দেশ্য ছিল ঐ দুই দলের মধ্যে শান্তি স্থাপন করা এবং নিজের মধ্যে দিয়ে ঐ দুই দল থেকে এক নতুন মানুষ সৃষ্টি করা, 16 এবং ক্রুশের ওপর তাঁর মৃত্যুর মাধ্যমে দুই জনগোষ্ঠীকে ঈশ্বরের সাথে একই দেহে পুনর্মিলিত করা৷ এর ফলে দুই দলের মধ্যে য়ে শত্রুভাব ছিল, তার অবসান ঘটল৷ 17 তাই খ্রীষ্টে এসে তোমরা যাঁরা ঈশ্বর থেকে দূরে ছিলে, তোমাদের কাছে শান্তির বাণী প্রচার করলেন; আর যাঁরা ঈশ্বরের কাছের লোক তাদের কাছে শান্তি নিয়ে এলেন৷ 18 হ্যাঁ, খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা সকলে একই আত্মার দ্বারা পিতার কাছে আসতে পারি৷ 19 তাই, হে অইহুদীরা, এখন তোমরা আর আগন্তুক বা বিদেশী নও৷ এখন ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সঙ্গে তোমরাও নাগরিক৷ তোমরা ঈশ্বরের পরিবারের সদস্য৷ 20 প্রেরিতরা ও ভাববাদীরা য়ে ভিত গেঁথেছিলেন তার ওপর তোমাদের গেঁথে তোলা হচ্ছে৷ খ্রীষ্ট স্বয়ং হচ্ছেন সেই দালানের গাঁথনীর প্রধান পাথর, 21 যা গোটা দালানটিকে ধরে রেখেছে৷ খ্রীষ্ট এই দালানটি গড়ে তোলেন য়েন তা প্রভুতে এক পবিত্র মন্দিরে পরিণত হতে পারে৷ 22 খ্রীষ্টে তোমাদের অন্য মানুষদের সঙ্গে একই সাথে গেঁথে তোলা হচ্ছে৷ তোমাদের এমন এক স্থান হিসেবে গঠন করা হয়েছে য়েখানে ঈশ্বর আত্মার মাধ্যমে বাস করেন৷
1 এই জন্য আমি (পৌল) তোমাদের অর্থাত্ অইহুদীদের জন্য খ্রীষ্ট যীশুর বন্দী৷ 2 তোমরা নিশ্চয়ই জান য়ে, ঈশ্বর তোমাদের সাহায্য করার জন্য তাঁর নিজ অনুগ্রহে এই কাজ আমায় দিয়েছেন৷ 3 ঈশ্বর তাঁর নিগূঢ়তত্ত্ব আমায় জানতে দিয়েছেন৷ তিনি নিজে য়েসব বিষয় আমায় দেখিয়েছেন, সে সকল বিষয়ের কিছু কিছু আমি ইতিমধ্যেই লিখেছি৷ 4 সেসব পাঠ করলে তোমরা বুঝতে পারবে য়ে আমি ঠিক ভাবেই খ্রীষ্ট সম্বন্ধে জেনেছি৷ 5 এর আগে যাঁরা পৃথিবীতে ছিলেন, তাঁদের কাছে এই নিগূঢ়তত্ত্ব জানানো হয় নি৷ কিন্তু এখন সেই নিগূঢ়তত্ত্ব তিনি তাঁর পবিত্র প্রেরিত ও ভাববাদীদের কাছে আত্মার মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন৷ 6 এই হল নিগূঢ়তত্ত্ব - যাঁরা অইহুদী তারা ইহুদীদের সঙ্গে সমানভাবে সব আশীর্বাদ পাবে৷ ইহুদী ও অইহুদী উভয়েই এক সঙ্গে একই দেহের সদস্য৷ খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা তারা একসঙ্গে ভোগ করবে৷ অইহুদীরা সুসমাচারের মধ্য দিয়ে এই সব কিছু পাবে৷ 7 ঈশ্বরের বিশেষ অনুগ্রহ দানের ফলে সেই সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমি দাস হলাম; ঈশ্বর তাঁর নিজ পরাক্রমে আমাকে সেই অনুগ্রহ দিয়েছেন৷ 8 ঈশ্বরের সমস্ত লোকের মধ্যে আমি নিতান্ত নগন্য; কিন্তু ঈশ্বর আমাকে এক বরদান করেছেন য়েন আমি অইহুদীদের কাছে খ্রীষ্টেতে য়ে ধারণাতীত সম্পদ আছে তা সুসমাচারের মাধ্যমে তাদের জানাই৷ সেই সম্পদ এত অগাধ য়ে সম্পূর্ণভাবে তা বুঝতে পারা যায় না৷ 9 ঈশ্বরের নিগূঢ় পরিকল্পনার কথা সকলকে জানাবার ভার ঈশ্বর আমায় দিয়েছেন৷ 10 সৃষ্টির শুরু থেকে ঈশ্বরের এই নিগূঢ় পরিকল্পনা তাঁর মধ্যেই গুপ্ত ছিল৷ ঈশ্বর, স্বয়ং সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা৷ ঈশ্বর চেয়েছিলেন য়েন স্বর্গীয়স্থানে সমস্ত আধিপত্য ও কর্তৃত্ত্বের কাছে নানাবিধ উপায়ে তাঁর প্রজ্ঞা প্রতিফলিত করেন এবং মণ্ডলীর মাধ্যমেই তারা এসব জানতে পায়৷ 11 পূর্বকালে ঈশ্বর য়ে সব পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছিলেন, এ সবই তার সঙ্গে মিলে যায়৷ তিনি আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করেছেন৷ 12 এখন খ্রীষ্টে আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে সাহস ও আত্মবিশ্বাসের সাথে আসতে পারি৷ খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমেই এটা করতে পারি৷ 13 আমি তোমাদের বলি, তোমাদের জন্য আমায় য়ে কষ্টভোগ করতে হয়েছিল তার জন্যে তোমরা হতাশ ও নিরাশ হযো না৷ আমার কষ্ট তোমাদের সম্মানিত করুক৷ 14 এই কারণে আমি পিতার কাছে নতজানু হই৷ 15 তাঁর কাছ থেকেই স্বর্গের বা মর্ত্যের প্রত্যেক পরিবার প্রকৃত নাম পায়৷ 16 আমি পিতার কাছে প্রার্থনা করি য়েন তাঁর মহান প্রতাপে তিনি তোমাদের সেই শক্তি দেন যার ফলে তোমাদের অন্তরাত্মা বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে৷ তাঁর আত্মার দ্বারা তিনি তোমাদের সেই শক্তি দেবেন৷ 17 আমি প্রার্থনা করি য়েন বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে খ্রীষ্ট তোমাদের হৃদয়ের মধ্যে বাস করেন৷ য়েন তোমাদের জীবন প্রেমে সুদৃঢ় হয় ও প্রেমরূপ ভিতের উপর গড়ে উঠতে পারে৷ 18 আমি প্রার্থনা করি,য়েন তোমরা ও ঈশ্বরের সমস্ত পবিত্র লোকরা য়েন খ্রীষ্টের প্রেমের মহত্ব বুঝতে সক্ষম হও৷ তোমরা য়েন সেই প্রেমের গভীরতা, উচ্চতা, দৈর্ঘ্য ও বিস্তার জানতে পার৷ 19 খ্রীষ্টের প্রেম এতো মহান য়ে কোন মানুষের পক্ষে সত্যি করে তা জানা সন্ভব নয়৷ আমি প্রার্থনা করছি য়েন তোমরা সেই প্রেম উপলধ্ধি করতে পার; আর তাতেই তোমরা সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের প্রকৃতিতে পূর্ণ হবে৷ 20 ঈশ্বরের য়ে শক্তি আমাদের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে, সেই শক্তির দ্বারা ঈশ্বর আমরা যা চাই তা চিন্তা করি তার থেকেও অনেক বেশী কাজ করতে পারেন৷ 21 মণ্ডলীতে ও খ্রীষ্ট যীশুতে যুগ পর্য়ায়ে যুগে যুগে তাঁরই মহিমা হোক্৷ আমেন৷
1 আমি প্রভুর বলে কারাগারে বন্দী৷ ঈশ্বর তোমাদের মনোনীত করেছেন য়েন তোমরা তাঁর লোক হতে পার৷ আমি তোমাদের সেইরকম জীবনযাপন করতে অনুরোধ করি, য়েভাবে ঈশ্বরের লোকদের জীবনযাপন করা উচিত৷ 2 তোমরা সর্বদাই নতনম্র থাক, সহিষ্ণু হও, ভালবেসে একে অপরকে গ্রহণ কর৷ 3 পবিত্র আত্মা তোমাদের যুক্ত করেছিলেন৷ সেই একতা রক্ষা করার জন্য সর্বোত্তমভাবে চেষ্টা কর৷ শান্তি তোমাদের একসঙ্গে ধরে থাকুক৷ 4 দেহ এক ও আত্মা এক, ঠিক সেইরকমই ঈশ্বর তোমাদের সকলকে এক প্রত্যাশার জন্য আহ্বান করেছেন৷ 5 কেবল একই প্রভু, এক বিশ্বাস ও এক বাপ্তিস্ম রয়েছে; 6 আর আছেন এক ঈশ্বর যিনি সকলের পিতা৷ যিনি সকলের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করেন৷ তিনি সর্বত্র আছেন ও সবকিছুতে আছেন৷ 7 খ্রীষ্ট আমাদের প্রত্যেককে বিশেষ বিশেষ বরদান দিয়েছেন৷ যাকে যা দিতে ইচ্ছা করেছেন তাকে তা দিয়েছেন৷ 8 তাই শাস্ত্র বলছে: ‘তিনি উর্দ্ধে আকাশে গেলেন, সঙ্গে বন্দীদের নিয়ে গেলেন, আর মানুষের হাতে তুলে দিয়ে গেলেন নানা বরদান৷’ গীতসংহিতা 68:18 9 যখন বলা হয়েছে, ‘তিনি উর্দ্ধে উঠে গেলেন,’ তার অর্থ কি? তার অর্থ এই য়ে প্রথমে তিনি নিম্নে পৃথিবীতে নেমেছিলেন৷ 10 সেই জন যিনি নেমে এসেছিলেন (খ্রীষ্ট) তিনি সেই একই ব্যক্তি যিনি আকাশের থেকেও উচ্চে উঠেছিলেন, যাতে সব কিছুই তাঁর দ্বারা পূর্ণ করতে পারেন৷ 11 সেই খ্রীষ্ট লোকদের বরদান করলেন, তাদের কয়েকজনকে প্রেরিত করলেন, আবার কয়েকজনকে ভাববাদী, কয়েকজনকে সুসমাচার প্রচারক, কয়েকজনকে শিক্ষক ও পালক হবার ক্ষমতা দিলেন৷ 12 ঈশ্বরের লোকদেরকে প্রস্তুত করার জন্য ও সেবার কাজ সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট এইসব বরদান করেছেন৷ খ্রীষ্টের দেহরূপে মণ্ডলীকে গঠন করার জন্য তিনি সেইসব বর দিয়েছেন৷ 13 য়ে পর্যন্ত না আমরা ঈশ্বরের পুত্রের বিষয়ে একই বিশ্বাস ও তত্ত্বজ্ঞানে সুষ্ঠভাবে যুক্ত হব, সেই পর্যন্ত এই কাজ চলতে থাকবে৷ আমাদের পরিণত মানুষের মতো হতে হবে৷ আমরা ততদিন বৃদ্ধি পেতে থাকব য়ে পর্যন্ত না খ্রীষ্টের মত হই ও তাঁর মত সম্পূর্ণ সিদ্ধ হই৷ 14 তখন আমরা আর শিশুর মত থাকব না৷ জাহাজ য়েমন তরঙ্গের দাপটে এদিক ওদিক চালিত হয়, তেমনি আমরা কোন নতুন শিক্ষা দ্বারা আর স্থানচ্যুত হব না; ঠগবাজ লোকের নতুন শিক্ষা দ্বারা আমরা প্রভাবিত হব না৷ এরা তাদের পরিকল্পনা ও চালবাজি দ্বারা মানুষকে ঠকিয়ে ভুল পথে নিয়ে যায়৷ 15 আমরা বরং প্রেমের সঙ্গে সত্য কথাই বলব, এইভাবে খ্রীষ্টের মতো সব বিষয়ে আমরা বৃদ্ধিলাভ করব৷ খ্রীষ্ট হলেন মস্তক, আমরা তাঁর দেহ৷ 16 সমস্ত দেহটা খ্রীষ্টের ওপর নির্ভরশীল৷ দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরস্পরের সঙ্গে একত্রে যুক্ত রয়েছে৷ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ যখন তাদের করণীয় কাজ করে, তখন সমস্ত দেহ বৃদ্ধিলাভ করে প্রেমে শক্ত ও দৃঢ় হয়৷ 17 প্রভুর হয়ে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, - যাঁরা বিশ্বাস করে না এমন লোকদের মতো জীবনযাপন করো না৷ এমন লোকের চিন্তাধারা মূল্যহীন৷ 18 তাদের জ্ঞান বুদ্ধি নেই৷ তারা কিছুই জানে না কারণ শুনতে চায় না৷ তাই য়ে জীবন ঈশ্বর তাদের দিতে চান তা থেকে তারা বঞ্চিত থাকে৷ 19 তাদের মনে লজ্জা বলে কোন অনুভূতিই নেই, তারা মন্দ পথে নিজেদের গা ভাসিয়ে দিয়েছে৷ বিনা দ্বিধায় তারা সব রকম খারাপ কাজ করে চলে৷ 20 কিন্তু খ্রীষ্টের কাছ থেকে তোমরা তো এমন মন্দ শিক্ষা পাও নি৷ 21 আমি জানি তাঁর অনুগামী হিসাবে সেই সত্য অনুসারে তোমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল, য়ে সত্য খ্রীষ্ট যীশুতে রয়েছে৷ 22 তোমাদের পুরানো প্রবৃত্তিকে ত্যাগ করতে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে৷ আগে য়েভাবে মন্দ জীবনযাপন করতে তা ছাড়তে বলা হয়েছে৷ সেই পুরানো সত্ত্বা দিন দিন মন্দ থেকে মন্দতর হয়, কারণ লোকরা তাদের মন্দ চিন্তা দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়৷ 23 কিন্তু তোমাদের শেখানো শিক্ষা অনুসারে তোমরা আপন হৃদয়ে পুনরায় নতুন হয়ে ওঠ, 24 এবং সেই নতুন সত্ত্বাকে অবশ্যই পরিধান কর৷ সেই নতুন সত্ত্বা ঈশ্বরের মত হবার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, যা সত্যই ভাল এবং পবিত্র৷ 25 তাই একে অপরের কাছে মিথ্যা বলা বন্ধ কর, কারণ আমরা পরস্পর এক দেহেরই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ৷ 26 রেগে গেলে তার প্রভাবে য়েন পাপ করো না এবং সারাদিন রাগ করে থেকো না৷ 27 তোমাকে পরাস্ত করতে দিয়াবলকে কোন রকম সুয়োগ নিতে দিও না৷ 28 য়ে এক সময় চুরি করত সে য়েন আর কখনও চুরি না করে, বরং ভাল কিছু কাজ করতে নিজ হাতে পরিশ্রম করে৷ সে য়েন সবরকম ভাল কাজ করে, তাহলে অভাবী লোকদের সঙ্গে ভাগ করে দেবার জন্যেও তার কিছু থাকবে৷ 29 অপরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করার সময় কোন খারাপ কথা বলো না৷ লোকেদের প্রযোজনীয় আত্মিক শক্তি দেবার জন্য যা ভাল কেবল তাই-ই বল৷ এমনভাবে কথা বল য়েন তোমার কথায় অপরের উপকার হয়৷ 30 তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে বিষন্ন করো না৷ আত্মা ঈশ্বরের কাছে প্রমাণ করে য়ে তোমরা ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত৷ ঈশ্বরের নিরূপিত সময়ে ঈশ্বর য়ে তোমাদের যুক্ত করবেন তার প্রমাণস্বরূপ ঈশ্বর সেই আত্মাকে তোমাদের মধ্যে দিয়েছেন৷ 31 সব রকমের তিক্ততা, রোষ, ক্রোধ, চেঁচামেচি, নিন্দা ও সব রকমের বিদ্বেষভাব তোমাদের থেকে দূরে রাখ৷ 32 পরস্পরের প্রতি স্নেহশীল হও, পরস্পরকে একইভাবে ক্ষমা কর, য়েভাবে ঈশ্বরও খ্রীষ্টে তোমাদের ক্ষমা করেছেন৷
1 তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তিনি তোমাদেরভালবাসেন; তাই ঈশ্বরের মতো হও৷ 2 ভালবাসাপূর্ণ জীবনযাপন কর৷ খ্রীষ্ট আমাদের য়েমন ভালবেসেছেন তেমনি করে অপরকে ভালবাস৷ খ্রীষ্ট আমাদের জন্য নিজেকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে সৌরভযুক্ত বলিরূপে উত্সর্গ করলেন৷ 3 তোমাদের মধ্যে য়েন ব্যভিচার না থাকে৷ তোমাদের মধ্যে কোনরকম নৈতিক অশুদ্ধতা ও লোভ য়েন না থাকে৷ কারণ ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের মধ্যে এসব থাকা ঠিক নয়৷ 4 লজ্জাজনক কোন কথাবার্তা তোমাদের মধ্যে য়েন না হয়৷ বোকার মতো কথা বলো না, নোংরা রসিকতা করো না, এইসব তোমাদের উপযুক্ত নয়৷ তোমাদের উচিত ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়া৷ 5 একথা তোমাদের নিশ্চিতরূপে জানা ভাল; যাঁরা য়ৌন পাপে লিপ্ত অথবা অপবিত্র জীবনযাপন করে অথবা লোভী, তারা খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের রাজ্যে কোন স্থান পাবে না, কারণ য়ে লোভী সে তো মূর্ত্তি পূজারী৷ 6 দেখো, কেউ য়েন অসার কথাবার্তা বলে তোমাদের প্রতারিত না করে৷ যাঁরা অবাধ্য তাদের ওপর ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসবে৷ 7 তাই এইসব লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখো না৷ 8 আমি তোমাদের এসব কথা বলছি, কারণ এক সময় তোমরা অন্ধকারে জীবনযাপন করতে; কিন্তু এখন প্রভুর অনুসারী হয়ে তোমরা আলোয় এসেছ, তাই তোমরা এখন জ্যোতির সন্তানদের মতো জীবনযাপন করো৷ 9 সবরকমের মঙ্গলভাব, নীতিপরায়ণতা ও সততা জ্যোতির দ্বারা উত্পন্ন হয়৷ 10 প্রভু কিসে সন্তুষ্ট হন তোমাদের তা শেখা উচিত৷ 11 যাঁরা অন্ধকারে চলে তাদের মন্দ কাজের অংশীদার হযো না৷ ঐসব কাজে কোন সুফল পাওয়া যায় না৷ সত্ কাজে লিপ্ত থাকো; অন্ধকারে যা করা হয় তা য়ে মন্দ তা দেখিয়ে দাও৷ 12 লোকরা অন্ধকারে গোপনে য়েসব কাজ করে তা উচ্চারণ করাও লজ্জার বিষয়৷ 13 ঐসব বিষয় য়ে কত মন্দ যখন তা আমরা দেখিয়ে দিই তখন সেই আলোই সব কিছু প্রকাশ করে৷ 14 যখন সব কিছু সহজেই দেখা যায় তখন সে সব আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায়৷ এই জন্যই বলা হয়েছে: ‘হে নিদ্রিত লোক, জাগো! আর মৃতদের মধ্যে থেকে ওঠ, তাতে খ্রীষ্ট তোমার ওপর আলো বর্ষণ করবেন৷’ 15 তাই তোমরা কিরকম জীবনযাপন করছ, সেদিকে বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রেখো৷ র্নির্বোধ লোকদের মত চলো না, কিন্তু জ্ঞানবানের মতো চল৷ 16 সময় বড় খারাপ, এইজন্য ভাল কিছু করার সুয়োগ পেলে তার সদ্বব্যবহার করো৷ 17 তাই নিজেদের জীবন নিয়ে অবোধের মতো চলো না৷ বুঝতে চেষ্টা কর য়ে প্রভু তোমাকে দিয়ে কি কাজ করাতে চান৷ 18 দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হযো না, তাতে আত্মিক জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে; তার পরিবর্তে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হও৷ 19 গীতসংহিতার স্তোত্র ও আত্মিক সংকীর্তনে তোমরা একে অপরের সাথে আলাপ কর৷ গাও আর অন্তরে প্রভুর উদ্দেশ্যে সুরেলা সঙ্গীত রচনা কর৷ 20 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে সব সময় সব কিছুর জন্য আমাদের ঈশ্বর ও পিতাকে সর্বদা ধন্যবাদ দাও৷ 21 স্বেচ্ছায় তোমরা একে অপরের কাছে নত থাক৷ খ্রীষ্টের প্রতি তোমাদের শ্রদ্ধার জন্যে তা কর৷ 22 বিবাহিতা নারীরা, তোমরা য়েমন প্রভুর অনুগত তেমনি তোমাদের স্বামীদের অনুগত থাক৷ 23 কারণ স্বামী তার স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ য়েমন খ্রীষ্ট তাঁর মণ্ডলীর মস্তক, তিনি তো তাঁর দেহেরও ত্রাণকর্তা৷ 24 তাই মণ্ডলী য়েমন খ্রীষ্টের অনুগত, তেমনি স্ত্রীরা, তোমরা সব বিষয়ে স্বামীর অনুগত থেকো৷ 25 স্বামীরা, তোমরাও তোমাদের স্ত্রীদের অনুরূপ ভালবাসো, য়েমন খ্রীষ্ট তাঁর মণ্ডলীকে ভালবেসেছেন ও তার জন্য নিজের প্রাণ উত্সর্গ করেছেন৷ 26 মণ্ডলীকে পবিত্র করার জন্য খ্রীষ্ট মৃত্যুভোগ করলেন৷ সুসমাচারের বাক্যরূপ জলে ধুয়ে তাকে পরিষ্কার করলেন, যাতে তিনি তা নিজেকে উপহার দিতে পারেন৷ 27 খ্রীষ্ট তাকে পরিষ্কার করলেন যাতে সে নিজেকে একজন জ্যোতির্মযী বধূ হিসাবে পবিত্র ও অনিন্দনীয়ভাবে উপহার দিতে পারে, যাতে তার কোন কলঙ্ক বা কুজন বা কোন অসম্পূর্ণতা না থাকে৷ 28 স্বামীরা য়েমন নিজেদের দেহকে ভালবাসে তেমনি তারা য়েন তাদের স্ত্রীকে ভালবাসে৷ য়ে কেউ তার স্ত্রীকে ভালবাসে, সে নিজেকেই ভালবাসে৷ 29 কারণ কেউ তার নিজের দেহকে ঘৃণা করে না, বরং নিজের দেহকে খাদ্য ইত্যাদি দিয়ে পুষ্ট করে তোলে এবং ভাল করে তার যত্ন নেয়৷ অনুরূপভাবে খ্রীষ্ট মণ্ডলীকে আহার দেন ও তার যত্ন করেন, 30 কারণ আমরা তাঁর দেহেরই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ৷ 31 শাস্ত্রে য়েমন বলছে: ‘এইজন্য মানুষ তার বাবা-মাকে ছেড়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হবে ও তারা উভয়ে এক দেহ হবে৷’ 32 এই নিগূঢ় সত্য মহান; আর আমি বলি এটা খ্রীষ্ট ও তাঁর মণ্ডলীর উদ্দেশ্যে প্রয়োজ্য৷ 33 যাইহোক, তোমরা প্রত্যেকে নিজেদেরস্ত্রীকে ভালবাসবে য়েমন তোমরা নিজেদের ভালবাস; আর স্ত্রীরও উচিত তার স্বামীকে শ্রদ্ধা করা৷
1 ছেলেমেয়েরা, প্রভু য়েভাবে চান সেইভাবে তোমাদের বাবা মাকে মেনে চলো; তোমাদের উচিত তাদের বাধ্য হওয়া৷ 2 আজ্ঞায় আছে, ‘তোমাদের মা-বাবাকে সম্মান করো৷’এটাই হল প্রতিশ্রুতিযুক্ত প্রথম আজ্ঞা৷ 3 সেই প্রতিশ্রুতি হচ্ছে: ‘তাহলে সবদিক দিয়ে তোমার মঙ্গল হবে ও তুমি র্ময়্তে দীর্ঘাযু হবে৷’ 4 তোমরা যাঁরা সন্তানের বাবা, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের সন্তানদের ক্রুদ্ধ করো না, বরং প্রভু য়েমন চান সেইরূপ শাসন করে ও শিক্ষা দিয়ে তাদের মানুষ করে তোল৷ 5 ক্রীতদাসরা, তোমরা তোমাদের এই জগতের মনিবদের ভয় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে মান্য করো৷ তোমরা য়েমন খ্রীষ্টের বাধ্য তেমনি আন্তরিকভাবে ও সত্য হৃদয়ে তাদেরও বাধ্য হও৷ 6 মানুষের অনুমোদনের জন্য কেবল তাদের চোখের সামনে য়ে তাদের সেবা করবে তা নয়, বরং খ্রীষ্টের ক্রীতদাসের মতো কাজ করো য়ে ক্রীতদাসরা ঈশ্বরের ইচ্ছা আন্তরিকভাবে পালন করছে৷ 7 ক্রীতদাস হিসেবে সমস্ত অন্তর দিয়ে এমনভাবে কাজ কর য়েন তুমি মানুষকে নয়, ঈশ্বরকে সেবা করছ৷ 8 মনে রেখো, তুমি ক্রীতদাস বা স্বাধীন যাই হও না কেন, তোমার সমস্তভাল কাজের জন্য প্রভু তোমায় পুরষ্কার দেবেন৷ 9 ক্রীতদাসের মনিবরা, তোমাদের বলি, তোমাদের দাসদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করো৷ তাদের কড়া কথা বলো না৷ মনে রেখো, তাদের ও তোমাদের প্রভু স্বর্গে আছেন; আর সেই প্রভু সকলকেই সমানভাবে বিচার করেন৷ 10 চিঠি শেষ করার আগে তোমাদের এই কথাই বলি, তোমরা প্রভুতে বলবান হও, তাঁরই মহাশক্তিতে শক্তিমান হও৷ 11 তোমরা ঈশ্বরের দেওয়া সমগ্র যুদ্ধসাজ পরে নাও, য়েন দিয়াবলের সমস্ত কৌশলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পার৷ 12 রক্তমাংসের দেহধারী মানুষের সঙ্গে আমাদের সংগ্রাম নয়৷ শাসকগণ, কর্তৃত্ত্বের অধিকারীসকল, এই অন্ধকার যুগের মহাজাগতিক ক্ষমতার সঙ্গে এবং স্বর্গরাজ্যের মন্দ শক্তি সমূহের সঙ্গে আমাদের সংগ্রাম৷ 13 এইজন্যই ঈশ্বরের প্রতিটি যুদ্ধসাজ তোমাদের পরে নেওয়া দরকার, তাহলে শয়তানের আক্রমণের সামনে তোমরা স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারবে, এবং যুদ্ধের শেষেও তোমরা দাঁড়িয়ে থাকবে৷ 14 সুতরাং শক্ত হয়ে দাঁড়াও, কোমর বেঁধে নাও; আর ন্যায়পরায়ণতার ঢালও নাও৷ 15 দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে সুসমাচারের শান্তির পাদুকা তোমাদের পায়ে পরে নাও৷ 16 এর দ্বারা তোমরা সেই মন্দ শক্তির সমস্ত রকমের অগ্নিবাণ নিভিয়ে দিতে পারবে; 17 আর পরিত্রাণরূপ শিরস্ত্রাণ ও পবিত্র আত্মার তলোয়ার, অর্থাত্ ঈশ্বরের শিক্ষা সঙ্গে নিও৷ 18 সবসময় পবিত্র আত্মাতে প্রার্থনা কর৷ সব রকম প্রার্থনায় প্রার্থনা করে তোমাদের যা প্রযোজন সে সবই জানাও৷ এর জন্য সব সময় সজাগ থেকো, কখনও হাল ছেড়ে দিও না৷ ঈশ্বরের সমস্ত লোকদের জন্য প্রার্থনা কর৷ 19 আমার জন্য প্রার্থনা কর, য়েন সুসমাচার প্রচারের সময় ঈশ্বর আমার মুখে উপযুক্ত কথা য়োগান; আর আমি সাহসের সঙ্গে সুসমাচারের গোপন সত্য বলতে পারি৷ 20 সেই সুসমাচারের পক্ষে আমি কথা বলে চলেছি৷ এই কারাগারের মধ্যেও আমি সেই কাজ করে যাচ্ছি৷ প্রার্থনা কর, য়েমন উচিত আমি য়েন তেমনি নির্ভীকভাবে এই সুসমাচার প্রচার করে যাই৷ 21 আমাদের প্রিয় ভাই তুখিক, যিনি প্রভুর কাজে একজন বিশ্বস্ত সেবক, তিনিই তোমাদের বলবেন, আমি কেমন আছি এবং কি করছি৷ 22 তাঁকে আমি তোমাদের কাছে এই জন্য পাঠালাম য়েন তোমরা আমাদের সব খবর জানতে পার ও তা জেনে উত্সাহ পাও৷ 23 ভাইরা, পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে বিশ্বাস সহ ভালবাসা ও শান্তি তোমাদের সহবর্তী হোক্৷ 24 যাঁরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে অশেষ ভালবাসায় ভালবাসে, ঈশ্বরের অনুগ্রহ তাদের সকলের সঙ্গে থাকুক৷ .
1 আমরা খ্রীষ্ট যীশুর দাস পৌল ও তীমথিয়, ফিলিপীতে খ্রীষ্ট যীশুতে যত ঈশ্বরের পবিত্র লোকরা আছেন তাঁদের কাছে এবং পালকবৃন্দ ও পরিচারকদের কাছে আমরা এই পত্র লিখছি৷ 2 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তোমাদের অনুগ্রহ ও শান্তি দান করুন৷ 3 আমি যখনই তোমাদের কথা স্মরণ করি, তখনই ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 4 আমি তোমাদের সকলের জন্য সব সময় আনন্দের সঙ্গে প্রার্থনা করে থাকি৷ 5 কারণ সুসমাচার প্রচারের কাজে তোমরা প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত আমাকে সাহায্য করে আসছ৷ 6 আমি এবিষয়ে নিশ্চিত য়ে ঈশ্বর তোমাদের অন্তরে শুদ্ধকাজ শুরু করেছেন৷ সেই শুদ্ধকাজ ঈশ্বর এখনও করে চলেছেন; এবং খ্রীষ্টের আগমনের দিনে তা সম্পন্ন করবেন৷ 7 তোমাদের সকলের বিষয়ে আমার এমন চিন্তা করাই উপযুক্ত, কারণ তোমরা সর্বদা আমার অন্তরে আছ৷ তোমাদের কাছে থাকার এই অনুভূতি আমার জাগে কারণ আমি কারাগারে থাকি, বা সুসমাচারের পক্ষে কথা বলে তা দৃঢ়তার সঙ্গে প্রমাণ করি, তার দ্বারা তোমরা সকলে আমার সেই অনুগ্রহের ভাগী হও৷ 8 ঈশ্বর জানেন য়ে আমি তোমাদের দেখতে কত আকাঙ্খা করি৷ খ্রীষ্ট যীশুর ভালবাসায় আমি তোমাদের সকলকে ভালবাসি৷ 9 তোমাদের জন্য আমার প্রার্থনা এই:য়েন তোমাদের ভালবাসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়; এবং সেই ভালবাসার সঙ্গে জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধি লাভ কর৷ 10 তোমরা য়েন ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পার আর যা ভাল তা বেছে নাও৷এইভাবে চল য়েন যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিন পর্যন্ত তোমরা শুদ্ধ ও নির্দোষ থাক৷ 11 খ্রীষ্টের মাধ্যমে তোমরা বিবিধ সত্ গুণাবলীতে পূর্ণ হও, যার দ্বারা ঈশ্বরের প্রশংসা ও মহিমা হয়৷ 12 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের একথা জানাতে চাই য়ে, আমার প্রতি যা ঘটেছে, তা বরং সুসমাচার প্রচারে সাহায্য করেছে৷ 13 এর ফলে সকল রক্ষীবাহিনী ও প্রত্যেকের কাছে এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে য়ে আমি খ্রীষ্টে বিশ্বাসী বলে কারাগারে রয়েছি৷ 14 এছাড়াও প্রভুতে বিশ্বাসী আমার অনেক ভাই ভয় না পেয়ে অপরকে আরো বেশী খ্রীষ্টের বার্তা বলতে সাহসী হয়েছে৷ 15 তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঈর্ষা ও বিবাদের মনোভাব নিয়ে সুসমাচার প্রচার করে, আবার অন্যরা যথার্থ সত্ ইচ্ছায় তা প্রচার করে৷ 16 শেষের দলটি ভালবেসেই একাজ করছে, কারণ এরা জানে য়ে সুসমাচারের পক্ষ সমর্থন করার জন্যই ঈশ্বর আমাকে এখানে নিযুক্ত করেছেন৷ 17 কিন্তু অন্যরা সত্ উদ্দেশ্য নয়, বরং নিজ নিজ স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দেশ্যে খ্রীষ্টকে প্রচার করছে৷ এখানে আমার বন্দী অবস্থায় তারা তাদের প্রচার দেখিয়ে আমার মনে দুঃখ দিতে চায়৷ 18 কিন্তু তাতে আমার কি এসে যায়? আসল বিষয়টি হল সত্ বা অসত্ উদ্দেশ্য নিয়ে য়ে ভাবেই হোক্ না কেন তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টেরই কথা বলছে৷ আমি চাই য়ে তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টের কথা বলে৷ ঠিক উদ্দেশ্য সামনে রেখেই তাদের একাজ করা উচিত৷ যদিও তারা একটা মিথ্যা ও ভুল উদ্দেশ্য নিয়ে তা করছে তবুও আমি খুশী কারণ তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টের কথা বলছে, আর আমি খুশীই থাকব৷ 19 তোমরা আমার জন্য প্রার্থনা করছ আর যীশু খ্রীষ্টের আত্মা আমায় সাহায্য করছেন, তাই আমি জানি য়ে এই সঙ্কট আমায় পরিত্রাণ এনে দেবে৷ 20 আমার আশা আকাঙ্খা এই য়ে আমি কোন বিষয়ে হতাশ হব না; কিন্তু সব সময়ের মত এখনও সেই সাহস করি য়ে আমি বেঁচে থাকি বা মরে যাই খ্রীষ্ট আমার দেহে মহিমান্বিত হবেন৷ 21 কারণ আমার কাছে আমার জীবন মানেই খ্রীষ্ট; আর মরণ হল লাভ৷ 22 এই দেহ নিয়ে যদি আমায় বেঁচে থাকতে হয় তবে আমি প্রভুর জন্য একাজ করার সুয়োগ পাব৷ আমি কোন্টা বেছে নেব, জীবন না মরণ? আমি জানি না৷ 23 আমি এই দোটানায় পড়েছি৷ আমি তো এখনই এ দেহ ত্যাগ করে খ্রীষ্টের সঙ্গে থাকতে চাই, কারণ এই তো শ্রেয়৷ 24 কিন্তু এই মরদেহে বেঁচে থাকা তোমাদের জন্য খুবই প্রযোজন৷ 25 আমি জানি য়ে আমাকে তোমাদের প্রযোজন আছে; তাই আমি জানি য়ে আমি বেঁচে থাকব, তোমাদের সকলের কাছেই থাকব৷ আমি তোমাদের বৃদ্ধি পেতে ও তোমাদের বিশ্বাসে আনন্দ পেতে সাহায্য করব; 26 এর ফলে যখন আমি আবার তোমাদের কাছে যাব তখন খ্রীষ্ট যীশুতে আমার সম্বন্ধে তোমাদের গর্ব করার আরো কারণ থাকবে৷ 27 কিন্তু যাইহোক না কেন, তোমরা খ্রীষ্টের সুসমাচারের য়োগ্যরূপে আচরণ কর৷ আমি এসে তোমাদের দেখি বা তোমাদের থেকে দূরে থাকি, আমি য়েন তোমাদের বিষয়ে শুনতে পাই য়ে, তোমরা এক আত্মার সুসমাচারের মধ্যে য়ে বিশ্বাস আছে তার পক্ষে কঠোর সংগ্রাম করছ; 28 আর যাঁরা তোমাদের বিরোধিতা করছে তাদের ভয় পাচ্ছ না! এর দ্বারাই প্রমাণ হবে য়ে তাদের বিনাশ হচ্ছে; কিন্তু পরিত্রাণ দ্বারা তোমরা উদ্ধার লাভ করছ, আর এই উদ্ধার ঈশ্বরের কাছ থেকেই আসে৷ 29 তোমরা য়ে খ্রীষ্ট যীশুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পেরেছ, এই সম্মান ও সুয়োগ ঈশ্বর তোমাদের দিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, কিন্তু খ্রীষ্টের জন্য দুঃখভোগ করার সম্মানও তোমাদের দিয়েছেন৷ 30 আমি যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম তখন সুসমাচার বিরোধী লোকদের সঙ্গে আমাকে কি রকম সংগ্রাম করতে হয়েছিল তা তোমরা জান এবং এখনও কঠোর সংগ্রাম চলছে আর তোমরাও সেই একই রকম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছ৷
1 তোমাদের মধ্যে কি খ্রীষ্টে উত্সাহ আছে? তোমাদের মধ্যে কি ভালবাসা থেকে উদ্ভুত সান্ত্বনা পাওয়া যায়? তোমাদের মধ্যে কি কোন করুণা ও দয়া আছে? 2 যদি এগুলি তোমাদের মধ্যে সত্যিই থাকে তবে তা আমায় অতিশয় আনন্দিত করবে, আমি চাই তোমরা একই বিশ্বাসে একমনা হও, পরস্পরের প্রতি ভালবাসায় সংযুক্ত থাকো, একই বিষয়ে বিশ্বাসী হয়ে সকলে একই আত্মায় সংযুক্ত থাকো এবং একই লক্ষ্য রেখে জীবনযাপন কর৷ 3 তোমাদের মধ্যে য়েন স্বার্থপরতা না থাকে বরং নম্রভাবে প্রত্যেকে নিজের থেকে অপরকে শ্রেষ্ঠ ভাবো৷ 4 প্রত্যেকে কেবল নিজের বিষয়ে নয়, কিন্তু অপরের মঙ্গল কিসে হয় সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখুক৷ 5 খ্রীষ্ট যীশুর মধ্যে য়ে ভাব ছিল, তোমাদের মধ্যেও সেই মনোভাব থাকুক৷ 6 যদিও সমস্ত দিক দিয়ে খ্রীষ্ট ছিলেন ঈশ্বরের মতো৷ তিনি ঈশ্বরের সমান ছিলেন; কিন্তু ঈশ্বরের সঙ্গে সমান থাকাটা তিনি আঁকড়ে ধরে থাকার মত এমন কিছু বলে মনে করেন নি৷ তিনি ঈশ্বরের স্তর থেকে নামলেন, 7 নিজের উচ্চস্থান ছেড়ে দিলেন এবং একজন ক্রীতদাসের মতো হলেন৷ তিনি মানুষের মত হয়ে জন্ম নিলেন ও একজন দাসের মতো হলেন৷ 8 তিনি যখন মানব জীবনযাপন করলেন, তখন তিনি সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের বাধ্যতা স্বীকার করলেন৷ সেই বাধ্যতার দরুণ তাঁর মৃত্যু হল, আর ক্রুশের ওপর তাঁকে প্রাণ দিতে হল৷ 9 খ্রীষ্ট ঈশ্বরের বাধ্য হলেন তাই ঈশ্বর তাঁকে পুনরুত্থিত করে সব কিছুর ওপরে উন্নত করলেন এবং সেই ঈশ্বর খ্রীষ্টের নামকে সবথেকে শ্রেষ্ঠ করলেন৷ 10 য়েন যাঁরা স্বর্গে আছে, যাঁরা মর্ত্যের লোক আর যাঁরা পাতালের তারা সকলেই সেই যীশু নামের কাছে নতজানু হয়, 11 আর প্রত্যেকে য়েন মুখে স্বীকার করে, ‘য়ে যীশু খ্রীষ্টই প্রভু৷’ এতেই পিতা ঈশ্বর মহিমান্বিত হবেন৷ 12 হে আমার প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা সবসময় বাধ্যতা সহকারে চলেছ৷ আমি যখন তোমাদের মধ্যে ছিলাম তখন তোমরা ঈশ্বরের বাধ্য ছিলে, এখন আরো বেশী প্রযোজন য়ে তোমরা বাধ্য হও কারণ এখন আমি তোমাদের সবার থেকে দূরে৷ তোমাদের পরিত্রাণ সম্পূর্ণ করার জন্য পরম শ্রদ্ধা ও ঈশ্বরে ভীতির সাথে কাজ করে যাও৷ 13 হ্যাঁ, ঈশ্বর তোমাদের মধ্যে কাজ করছেন; ঈশ্বরের শক্তির সাহায্যে তোমরা সেইসব কাজ কর, যা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে৷ 14 তোমরা অভিযোগ ও তর্ক-বিতর্ক না করে সব কাজ কর, 15 য়েন নির্দোষ ও খাঁটি লোক হও, এ যুগের কুটিল ও বিপথগামী লোকদের মাঝে ঈশ্বরের নিষ্কলঙ্ক সন্তানরূপে থাক৷ তাদের মাঝে এমনভাবে থাক য়েন অন্ধকার জগতে তোমরা উজ্জ্বল নক্ষত্র৷ 16 তোমরা তাদের কাছে সেই শিক্ষা দাও যা জীবন আনে, তাহলে খ্রীষ্ট যখন ফিরে আসবেন তখন আমার আনন্দ করার মত কিছু থাকবে৷ আমার পরিশ্রম য়ে বৃথা হয় নি এবং আমি য়ে বৃথা দৌড়োই নি এই জন্য আমি আনন্দ করতে পারব৷ 17 ঈশ্বরের সেবার জন্য তোমাদের জীবন বলিরূপে উত্সর্গ করতে তোমাদের বিশ্বাস প্রেরণা য়োগায়৷ হয়তো তোমাদের উত্সর্গের সঙ্গে আমার নিজের রক্তও উত্সর্গ করতে হবে; আর তাই যদি করতে হয় তবে আমি পরম সুখী হব ও তোমাদের জন্য আমি আনন্দে ভরপুর হব৷ 18 আমার সঙ্গে তোমাদেরও আনন্দ ও উল্লাস করা উচিত৷ 19 আমি আশা করছি, প্রভু যীশুর সাহায্যে শিগ্গির তোমাদের কাছে তীমথিয়কে পাঠাব, য়েন তোমাদের খবরা-খবর জেনে আমি আশ্বস্ত হই৷ 20 আমার কাছে তীমথিয় ছাড়া আর কেউ নেই য়ে আমার সঙ্গে একাত্ম ও তোমাদের জন্যে সত্যি সত্যিই চিন্তা করে৷ 21 কারণ অন্য সকলেই খ্রীষ্ট যীশুর বিষয় নয়, কিন্তু কেবল নিজেদের বিষয়েই চিন্তা করছে৷ 22 আর তোমরা তীমথিয়র চরিত্র জান৷ ছেলে য়েমন তার বাবার সঙ্গে কাজ করে, ইনিও তেমনি আমার সঙ্গে সুসমাচার প্রচারের সেবা কাজ করে চলেছেন৷ 23 খুব শিগ্গিরই আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠাতে চাইছি৷ আমার কি হবে তা জানতে পারলেই আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব; 24 আর আমি বিশ্বাস করি য়ে প্রভুর কৃপায় আমি নিজেও শীঘ্রই তোমাদের কাছে যাব৷ 25 ইপাফ্রদীত খ্রীষ্টেতে আমার ভাই, খ্রীষ্টের সেনাদলে তিনি আমার এক সহকর্মী ও সেবক৷ আমার প্রযোজনের সময় তোমরা তাঁকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলে৷ আমি এখন ভাবছি য়ে তাঁকে তোমাদের কাছে ফেরত্ পাঠানোর প্রযোজন৷ 26 আমি তাঁকে পাঠাচ্ছি এই জন্য য়ে তিনি তোমাদের সকলকে দেখতে চান, আর তোমরা তাঁর অসুস্থতার কথা শুনেছ বলে তিনি খুবই চিন্তিত৷ 27 সত্যিই তিনি খুবই অসুস্থ হয়েছিলেন৷ মরণাপন্ন অবস্থা হয়েছিল, কিন্তু ঈশ্বর তাঁর প্রতি করুণা করেছেন, কেবল তাঁর প্রতি নয় কিন্তু আমার ওপরও দয়া করেছেন য়েন দুঃখের উপর আরো দুঃখ আমার না হয়৷ 28 তাই এত আগ্রহের সঙ্গে আমি তোমাদের কাছে তাঁকে পাঠাচ্ছি য়েন তোমরা তাঁকে দেখে আবার আনন্দ পাও; আর তোমাদের বিষয়ে আমাকে আর চিন্তা করতে না হয়৷ 29 তোমরা তাঁকে প্রভুতে সানন্দে গ্রহণ করো৷ এই ধরণের লোকদের সম্মান করো৷ 30 তাঁকে সম্মান দেখানো উচিত কারণ খ্রীষ্টের কাজের জন্য তিনি প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন৷ আমাকে সাহায্য করতে গিয়ে তিনি নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েছিলেন; এ এমন সাহায্য ছিল যা তোমরা করতে পারতে না৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা প্রভুতে আনন্দ কর৷ এই একই কথা আবার লিখতে আমার কোন কষ্ট হচ্ছে না; আর এটি তোমাদের নিরাপত্তার জন্য৷ 2 ‘কুকুরদের’ থেকে সাবধান! যাঁরা মন্দ কাজ করে ও যাঁরা দেহকে ছিন্নভিন্ন করতে চায় তাদের থেকে সাবধান! 3 কারণ আমরাই তো প্রকৃত সুন্নত হওয়া লোক; আমরা ঈশ্বরের আত্মায় উপাসনা করি, আর খ্রীষ্ট যীশুতে গর্ব বোধ করি৷ আমরা নিজেদের ওপর বা বাহ্যিক কোন কিছু করার ওপর আস্থা রাখি না৷ 4 যদিও আমি নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারতাম, তবুও আমি তা করি না৷ যদি কোন লোকের মনে হয় য়ে সে নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারে তবে তার জানা ভাল য়ে নিজের ওপর আস্থা রাখার জন্য আরো বড় কারণ আমার আছে৷ 5 জন্মের পর যখন আমার বয়স আট দিন তখন আমার সুন্নত হয়েছে; আমি ইস্রায়েলীয়, বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোক৷ আমি একজন ইব্রীয়, আমার বাবা-মা ইব্রীয়৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালনে গোঁড়া হওয়ায় আমি ফরীশী হয়েছিলাম৷ 6 আমার নিজের ইহুদী ধর্মের বিষয়ে আমি এতই উত্সাহী ছিলাম য়ে আমি খ্রীষ্ট মণ্ডলীর প্রতি নির্য়াতন করতাম৷ আমি এমন নিখুঁতভাবে মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতাম য়ে তার মধ্যে কোন ত্রুটি ছিল না৷ 7 এক সময়ে ঐসব বিষয় আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল; কিন্তু আমি খ্রীষ্টকে পেয়েছি, তাই ঐসব বিষয়ের মূল্য আর আমার কাছে রইল না৷ 8 কেবল ঐসব বিষয় নয়, বরং সমস্ত কিছুই আমার প্রভু যীশু খ্রীষ্টের জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতার কাছে নিতান্তই নগন্য বলে মনে করলাম৷ তাঁর জন্য আমি সবই বর্জন করেছি৷ এখন আমি ঐ সবকিছু আবর্জনার মতোই মনে করি, আর খ্রীষ্টকে আরো বেশী করে পেতে এ আমায় সাহায্য করে, 9 এবং তাঁর সঙ্গে সংযুক্ত রাখে৷ খ্রীষ্টেতে আমি ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছি৷ এই ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া আমার বিধি-ব্যবস্থা পালনের মধ্য দিয়ে আসে নি৷ ঈশ্বরের কাছ থেকে দানরূপে এ আমি পেয়েছি৷ খ্রীষ্টে আমার সে বিশ্বাস আছে, এই বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বর আমাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন৷ 10 আমি চাই খ্রীষ্টকে ও মৃতদের মধ্য থেকে তাঁর পুনরুত্থানের শক্তিকে জানতে৷ আমি খ্রীষ্টের দুঃখভোগের সহভাগীতা লাভ করতে চাই৷ এইভাবে য়েন তাঁর মৃত্যুতে তাঁর সমরূপ হই৷ 11 আমি যদি এসবের সহভাগী হই, তবে আমি প্রত্যাশা করতে পারি য়ে আমিও মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হতে পারব৷ 12 একথা বলছি না য়ে আমি লক্ষ্যে পৌঁছে গেছি বা পূর্ণতা পেয়েছি৷ আমি সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে চেষ্টা করছি এবং য়ে উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট আমাকে ধরেছিলেন তাঁর সেই উদ্দেশ্য পর্যন্ত আমি পৌঁছতে চাই৷ 13 ভাই ও বোনেরা, আমি জানি য়ে আমি সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি নি৷ 14 কিন্তু একটি বিষয়ে আমি চেষ্টা করে চলেছি; অতীতের সবকিছু ভুলে সামনের লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রাণপণ চেষ্টা করছি যাতে পুরস্কার লাভ করি৷ উর্ধস্থ জীবনের জন্য খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের আহ্বানস্বরূপ এই পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি আমাকে দেওয়া হয়েছে৷ 15 আমরা যাঁরা আত্মিকভাবে পরিপক্ক, আমাদের উচিত এইভাবে চিন্তা করা; আর যদি কোন বিষয়ে তোমাদের অন্যরকম মনোভাব থাকে তবে ঈশ্বর সে বিষয়ে তোমাদের কাছে পরিষ্কার করে দেবেন৷ 16 এস আমরা ইতিমধ্যে য়ে সত্যে পৌঁছেছি, সেই সত্য অনুসরণ করি৷ 17 ভাই ও বোনেরা, তোমরা আমার মতো জীবনযাপন করো৷ তোমাদের য়েমন দেখানো হয়েছে সেইভাবে যাঁরা চলে, তাদের অনুকরণ করো৷ 18 অনেকে আছে যাঁরা খ্রীষ্টের ক্রুশের শত্রুর মত আচরণ করে৷ আগে বহুবার আমি তাদের কথা তোমাদের বলেছি, এখন চোখের জল ফেলতে ফেলতে আমি তাদের কথা আবার তোমাদের বলছি৷ 19 য়েভাবে তারা চলছে তার পরিণাম বিনাশ৷ তারা ঈশ্বরের সেবা করে না, কেবল নিজেদের তুষ্টির জন্যই বাঁচে৷ তারা লজ্জাকর কাজ করে আর তাই নিয়ে তারা গর্ব বোধ করে৷ তারা কেবল পার্থিব বিষয়েই ভাবে৷ 20 আমাদের যথার্থ রাজ্য স্বর্গে৷ সেই স্বর্গ থেকে আমাদের ত্রাণকর্তার আগমণের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি৷ আমাদের ত্রাণকর্তা হলেন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট৷ 21 তিনি এসে আমাদের এই দীনতার দেহকে বদলে তাঁর নিজের মহিমান্বিত দেহের সমরূপ করবেন৷ খ্রীষ্ট তাঁর নিজ পরাক্রমে এই কাজ করতে পারেন এবং তাঁর সেই পরাক্রমে খ্রীষ্ট সমস্ত বিষয়ের উপরে কর্তৃত্ত্ব করতে সমর্থ৷
1 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের ভালবাসি আর তোমাদের দেখতে চাই৷ তোমরা আমার আনন্দ ও গর্বের বিষয়৷ আমি য়েমন বলেছি, তেমনভাবেই সর্বদা প্রভুর বাধ্য থেকো৷ 2 এখন আমি ইবদিয়াকে আর সুন্তুখীকে অনুরোধ করছি, তোমরা প্রভুতে বোন হিসাবে পরস্পর একমত হও৷ 3 তোমরা যাঁরা আমার বিশ্বস্ত সহকর্মী, তোমাদের এই মহিলাদের সাহায্য করতে বলছি৷ এরা সুসমাচার প্রচারের কাজে আমার সঙ্গে সংগ্রাম করছেন৷ ক্লীমেন্ত ও আমার অন্যান্য সহকর্মীবৃন্দের সঙ্গে এঁরা কাজ করেছেন, এঁদের নাম জীবন-পুস্তকে লেখা আছে৷ 4 সবসময় প্রভুতে আনন্দ কর, আমি আবার বলছি আনন্দ কর৷ 5 তোমাদের শান্ত সংযত আচরণ দ্বারা য়েন তোমরা সকলের প্রীতির পাত্র হয়ে ওঠো৷ প্রভু শিগ্গির আসছেন৷ 6 কোন কিছুতে উদ্বিগ্ন হযো না; বরং সকল বিষয়েই প্রার্থনার মাধ্যমে তোমাদের যা কিছু প্রযোজন তা একমাত্র ঈশ্বরকে জানাও এবং তাঁকে ধন্যবাদ দাও৷ 7 তাতে সমস্ত চিন্তার অতীত য়ে ঈশ্বরের শান্তি, তা তোমাদের হৃদয় ও মনকে খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করবে৷ 8 সবশেষে আমার ভাই ও বোনেরা, আমি একথাই বলব, যা কিছু সত্য, যা কিছু সম্মানীয়, যা কিছু ন্যায়, যা কিছু পবিত্র, যা কিছু প্রীতিজনক, যা কিছু ভদ্র, য়ে কোন সদগুণ ও য়ে কোন সুখ্যাতিযুক্ত বিষয় দিয়ে তোমাদের মন পূর্ণ রেখো৷ 9 তোমরা আমার কাছে থেকে যা শিখেছ, শুনেছ ও পেয়েছ আর তোমরা আমাকে যা করতে দেখেছ, তাই কর৷ তাহলে যিনি শান্তির ঈশ্বর তিনি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন৷ 10 আমি প্রভুতে খুব আনন্দ পেয়েছি, কারণ এতদিন পর এখন তোমরা আবার আমার জন্য চিন্তা করতে নতুন উদ্দীপনা পেয়েছ৷ তোমরা সব সময়ই আমার বিষয়ে চিন্তা কর, কিন্তু তা দেখাবার সুয়োগ পাও নি৷ 11 আমার প্রযোজনের জন্য য়ে আমি তোমাদের একথা বলছি তা নয়, কারণ য়ে কোন অবস্থাতেই তৃপ্ত থাকতে আমি শিখেছি৷ 12 অভাবের সময় কিভাবে জীবনযাপন করতে হয় তা আমি জানি৷ আবার প্রাচুর্য়ের সময় কিভাবে চলতে হয় তাও আমি জানি৷ য়ে কোন অবস্থায় পরিতৃপ্ত বা ক্ষুধিত থাকতে, উপচয় কি অভাব ভোগ করতে য়ে কোন অবস্থায় জীবনযাপনের গূঢ়তত্ত্ব আমি শিখেছি৷ 13 যিনি আমাকে শক্তি দেন, সেই খ্রীষ্টের শক্তিতে আমি সকল অবস্থাতেই বলবান৷ 14 যাইহোক, আমার প্রযোজনের সময় তোমরা আমায় সাহায্য করতে এগিয়ে এসে ভালোই করেছ৷ 15 তোমরা ফিলিপীয়েরা ভাল করেই জান, সেই শুরুতে আমি সেখানে যখন সুসমাচার প্রচার করেছিলাম, আমি যখন মাকিদনিয়া ছেড়ে যাই সেই সময় একমাত্র তোমাদের মণ্ডলীই আমাকে সাহায্য করেছিল৷ 16 আমি যখন থিসলনীকীতেও ছিলাম সেখানেও তোমরা বেশ কয়েকবার আমায় সাহায্য পাঠিয়েছিলে৷ 17 আসলে তোমাদের কাছ থেকে কিছু সাহায্য পাব এই আশায় য়ে আমি একথা বলছি তা নয়, বরং আমি চাই য়েন দানের মাধ্যমে তোমাদের মঙ্গল হয়৷ 18 আমার যা প্রযোজন সে সব কিছুই আমার আছে, বলতে কি প্রযোজনের অতিরিক্ত আছে৷ তোমরা ইপাফ্রদীতের মারফত্ য়ে উপহার আমাকে পাঠিয়েছ, তাতে আমার সব অভাব মিটেছে৷ তোমাদের সেই উপহার ঈশ্বরের কাছে প্রীতিজনক ও গ্রহণয়োগ্য সুরক্ষিত অর্য়্ঘের মত৷ 19 আমার ঈশ্বর তোমাদের সব অভাব মিটিয়ে দেবেন, খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের য়ে মহিমার ভাণ্ডার আছে তার থেকে তিনি তোমাদের সব অভাব মোচন করবেন৷ 20 আমাদের ঈশ্বর ও পিতার মহিমা যুগে যুগে বিরাজ করুক, আমেন৷ 21 যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে সংযুক্ত ঈশ্বরের লোকদের প্রত্যেক জনকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ আমার সঙ্গে য়ে সব ভাইরা আছেন তাঁরা তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 22 ঈশ্বরের সকল লোকরা যাঁরা এখানে আছেন, বিশেষতঃ কৈসরের রাজপ্রাসাদের লোকরাও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 23 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সঙ্গে সর্বদা থাকুক৷
1 আমি পৌল, ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে খ্রীষ্ট যীশুর প্রেরিত ও আমাদের ভাই তীমথিয়, 2 কলসীতে ঈশ্বরের য়ে সকল পবিত্র ও বিশ্বস্ত ভাই ও বোনেরা খ্রীষ্টেতে আছে, তাদের আমরা এই চিঠি লিখছি৷ আমাদের পিতা ঈশ্বরের কাছ থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের ওপরে য়েন বর্তায়৷ 3 আমরা প্রার্থনা করার সময় সব সময়ই তোমাদের হয়ে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই৷ 4 আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই কারণ খ্রীষ্টের ওপর তোমাদের বিশ্বাস, আর ঈশ্বরের সমস্ত লোকদের জন্য তোমাদের ভালবাসার কথা আমরা শুনেছি৷ 5 এই বিশ্বাস ও ভালবাসার কারণ তোমাদের অন্তরের সেই প্রত্যাশা৷ তোমরা জান য়ে তোমরা যা কিছু প্রত্যাশা করছ, সে সব স্বর্গে তোমাদের জন্য সঞ্চিত রয়েছে৷ যখন সত্য শিক্ষা ও সুসমাচার তোমাদের কাছে বলা হয়েছিল, তখনই প্রথম সেই প্রত্যাশার বৃত্তান্ত তোমরা শুনেছিলে৷ 6 সেই সুসমাচার সমস্ত জগতে প্রচারিত হচ্ছে আর তা ফলদাযী হচ্ছে ও বৃদ্ধি লাভ করছে৷ তোমরা যখন সুসমাচার শুনে ঈশ্বরের অনুগ্রহের কথা জেনেছিলে তখন থেকে তোমাদের মধ্যেও তা সেই একইভাবে কাজ করছে৷ 7 ইপাফ্রার কাছ থেকে তোমরা ঈশ্বরের অনুগ্রহের কথা জেনেছ, ইপাফ্রা আমাদের সহদাস, আমরা তাকে ভালবাসি৷ আমাদের জন্য তিনি খ্রীষ্টের এক বিশ্বস্ত সেবক৷ 8 পবিত্র আত্মা তোমাদের অন্তরে য়ে গভীর ভালবাসা দিয়েছেন সে কথাও তিনি আমাদের জানিয়েছেন৷ 9 এইজন্য য়ে দিন থেকে আমরা তোমাদের বিষয়ে এই সব কথা জানতে পেরেছি, সেইদিন থেকেই আমরা তোমাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে অবিরত প্রার্থনা করছি৷ যাতে ঈশ্বর তোমাদের জীবনে কি করতে চান তা পূর্ণরূপে জানতে পার; এবং যাতে তোমরা সকল আত্মিক বিষয়ে প্রজ্ঞা ও বোধশক্তি লাভ কর৷ 10 তার ফলে তোমরা এমন জীবনযাপন কর যাতে তাঁর গৌরব হয় ও প্রভু সমস্ত দিক দিয়ে খুশী হন৷ আমি প্রার্থনা করি য়েন তোমরা সব রকমের সত্ কাজ করে ফলবান হও এবং ঈশ্বরের জ্ঞানে বৃদ্ধিলাভ কর৷ 11 য়েন ঈশ্বর তাঁর মহাশক্তিতে তোমাদের শক্তিমান করেন ও তাঁর পরাক্রমে তোমাদের বলিষ্ঠ করেন; য়েন দুঃখ কষ্ট এলে তোমরা সহ্য করতে ও ধৈর্য্য ধরতে পার৷ 12 তাহলে তোমরা আনন্দ সহকারে পিতাকে ধন্যবাদ দিতে পারবে, যিনি তাঁর আলোয় সন্তানদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অংশ ভোগ করার য়োগ্যতা তোমাদের দিয়েছেন৷ 13 তিনিই অন্ধকারের কর্তৃত্ত্ব থেকে আমাদের উদ্ধার করে তাঁর প্রিয় পুত্রের রাজত্বে স্থান দিয়েছেন৷ 14 তাঁর মাধ্যমেই আমরা মুক্ত হই ও আমাদের সব পাপের ক্ষমা হয়৷ 15 কেউই ঈশ্বরকে দেখতে পায় না; কিন্তু যীশুই অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি এবং সমস্ত সৃষ্টির প্রথমজাত৷ 16 তাঁর পরাক্রমে সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে৷ স্বর্গে ও র্ময়্তে, দৃশ্য ও অদৃশ্য যা কিছু আছে, সমস্ত আত্মিক শক্তি, প্রভুবৃন্দ, শাসনকারী কর্তৃত্ত্ব, সকলই তাঁর দ্বারা ও তাঁর নিমিত্ত সৃষ্ট হয়েছে৷ 17 সবকিছুর পূর্বেই খ্রীষ্টের অস্তিত্ব ছিল; তাঁর শক্তিতেই সব কিছু স্থিতিশীল আছে৷ 18 খ্রীষ্ট হলেন দেহের মস্তক সেই দেহ হচ্ছে মণ্ডলী৷ সব কিছুর আদি তিনি, মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিতদের মধ্যে তিনি প্রথম, তাই সব কিছুতেই প্রথমে তাঁর স্থান৷ 19 তাই ঈশ্বর তাঁর সমস্ত পূর্ণতায় খ্রীষ্টে বাস করে খুশী হয়েছিলেন, 20 আর খ্রীষ্টের ক্রুশের ওপর পতিত রক্তের দ্বারা শান্তি স্থাপন করে কি স্বর্গের, কি র্ময়্তের সব কিছু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর কাছে পুনরায় ফিরিয়ে এনেছিলেন৷ 21 এক সময় তোমরা ঈশ্বর থেকে আলাদা ছিলে৷ তোমরা তোমাদের চিন্তায় ও তোমাদের কুকর্মের জন্য ঘোর ঈশ্বর বিরোধী ছিলে৷ 22 এখন খ্রীষ্টের পার্থিব দেহের দ্বারা ঈশ্বর তোমাদের তাঁর সঙ্গে পুনর্মিলিত করেছেন, যাতে তিনি তোমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে পবিত্র, নির্দোষ ও নিষ্কলঙ্করূপে উপস্থিত করতে পারেন৷ 23 তোমরা য়ে সুসমাচার শুনেছ যদি তা বিশ্বাস করে স্থির থাক এবং সুসমাচার থেকে য়ে প্রত্যাশা তোমরা পেয়েছ তা থেকে যদি সরে না যাও তবে খ্রীষ্ট এসব সম্পন্ন করবেন৷ জগতের সর্বত্র সমস্ত লোকের কাছে সেই একই সুসমাচার প্রচারিত হয়েছে৷ আমি পৌল সেই সুসমাচারের দাস হয়েছি৷ 24 এখন তোমাদের জন্য আমায় য়ে কষ্টভোগ করতে হয় তার জন্য আমি আনন্দিত৷ খ্রীষ্টের দুঃখভোগের য়ে অংশ অপূর্ণ রয়ে গেছে তা আমি তাঁর দেহরূপ মণ্ডলীর হয়ে আমার দেহে দুঃখভোগ করে পূর্ণ করছি৷ 25 আমি মণ্ডলীর সেবকরূপে কাজ করছি, কারণ ঈশ্বর আমাকে এই বিশেষ কাজের জন্য নিযোগ করেছেন৷ এই প্রচারে তোমাদের উপকার হচ্ছে; আমার কাজ হল ঈশ্বরের সত্য বাক্য সম্পূর্ণরূপে প্রচার করা৷ 26 এই সত্য বাক্যের নিগূঢ়তত্ত্ব সৃষ্টির শুরু থেকে গুপ্ত ছিল এবং তা সমস্ত মানুষের কাছে গুপ্ত ছিল; কিন্তু এখন ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের কাছে তা প্রকাশিত হয়েছে৷ 27 ঈশ্বর তাঁর আপন লোকদের কাছে তাঁর মূল্যবান মহিমাময় গুপ্ত সত্য প্রকাশ করতে মনস্থ করলেন; সেই মহান সত্য সব মানুষের জন্য৷ সেই গুপ্ত সত্য খ্রীষ্ট স্বয়ং যিনি তোমাদের মধ্যে আছেন এবং ঈশ্বরের গৌরবের ভাগী হবার জন্য তিনিই কেবল আমাদের ভরসা৷ 28 তাই সমস্ত প্রজ্ঞায় প্রত্যেককে বিশদভাবে উপদেশ দিয়ে এবং সতর্ক করে আমরা খ্রীষ্টকে প্রচার করি, যাতে প্রত্যেককে ঈশ্বরের কাছে খ্রীষ্টে পরিপক্ক মানুষ হিসেবে উপস্থিত করতে পারি৷ 29 এই উদ্দেশ্যে আমার মধ্যে মহাপরাক্রমে ক্রিয়াশীল খ্রীষ্টের শক্তি ব্যবহার করে আমি পরিশ্রম ও সংগ্রাম করছি৷
1 আমি চাই, তোমরা জান য়ে তোমাদের সাহায্য করার জন্য আমি কতো কঠোর পরিশ্রম করছি৷ লায়দিকেয়ার লোকদের ও আরো অনেকের জন্যও পরিশ্রম করছি, যাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাত্ বা পরিচয় হয় নি৷ 2 আমি চাই তারা ও তোমরা য়েন শক্তিশালী হয়ে ওঠো! এবং য়েন পরস্পর ভালবাসার বন্ধনে বাঁধা থাকো; আর সুবিবেচনার মধ্য দিয়ে য়ে দৃঢ় বিশ্বাস আসে তাতে সমৃদ্ধ হও৷ আমি চাই তোমরা ঈশ্বরের নিগূঢ় সত্য পূর্ণরূপে জানো৷ ঈশ্বর যা প্রকাশ করেছেন সেই গুপ্ত সত্য খ্রীষ্ট নিজে৷ 3 খ্রীষ্টের মধ্যেই নিশ্চিতরূপে সমস্ত বিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ঐশ্বর্য নিহিত আছে৷ 4 আমি এসব কথা বলছি, য়েন কেউ তোমাদের বড় বড় মতবাদ দিয়ে বিপথগামী না করে; যা মনে হয় ভাল কিন্তু আসলে নিছক মিথ্যা৷ 5 দৈহিকভাবে আমি তোমাদের কাছ থেকে দূরে থাকলেও আত্মিকভাবে আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি৷ তোমাদের সুশৃঙ্খল জীবন দেখে ও খ্রীষ্টে তোমাদের সুদৃঢ় বিশ্বাস দেখে আমি আনন্দিত৷ 6 খ্রীষ্ট যীশুকে তোমরা য়েমনভাবে প্রভু বলে গ্রহণ করেছ তেমনভাবেই যীশুতে জীবনযাপন করতে থাক৷ 7 খ্রীষ্টের মধ্যে গভীরভাবে গেঁথে গিয়ে তাঁরই ওপরে তোমরা গড়ে ওঠো এবং য়েমন তোমাদের শেখানো হয়েছে সেইভাবেই বিশ্বাসে দৃঢ় হও; আর সর্বদা কৃতজ্ঞতা সহকারে ধন্যবাদ দাও৷ 8 সাবধান থেকো, কেউ য়েন দর্শন বিদ্য়া ও ফাঁকির ছলনা দ্বারা তোমাদের বিশ্বাস থেকে সরিয়ে না নিয়ে যায়৷ ঐসব মতবাদ খ্রীষ্ট হতে আসে নি, এসেছে মানুষের পরম্পরাগত শিক্ষা ও জগতের লোকদের প্রাথমিক ধারণার মধ্য দিয়ে৷ 9 কারণ ঈশ্বরের সম্পূর্ণতা খ্রীষ্টের দেহের মধ্যে বাস করেছে; 10 আর তোমরা খ্রীষ্টেতেই পূর্ণতা লাভ করেছ, তোমাদের আর কিছুরই প্রযোজন নেই৷ খ্রীষ্ট সমস্ত শাসক ও আধিপত্যের কর্তা৷ 11 খ্রীষ্টে তোমাদের ভিন্ন রকমের সুন্নত হয়েছে৷ সেই সুন্নত মানুষের হাত দিয়ে হয় নি, এই সুন্নত হচ্ছে তোমাদের পাপময় প্রকৃতি থেকে মুক্তিলাভ; আর এই রকমের সুন্নত খ্রীষ্টেই সম্পন্ন হয়েছে৷ 12 তোমাদের বাপ্তিস্মের সময় তোমাদের পুরানো সত্ত্বা মরে গিয়েছিল, তোমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে সমাধিস্থ হয়েছিলে, সেই বাপ্তিস্মে তোমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে পুনরুত্থিত হয়েছিলে কারণ ঈশ্বরের পরাক্রমে তোমাদের বিশ্বাস ছিল৷ খ্রীষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করতে ঈশ্বরের সেই পরাক্রম প্রকাশিত হয়েছিল৷ 13 তোমাদের পাপের কারণে এবং তোমাদের পাপময় প্রকৃতির কবল থেকে উদ্ধার লাভ বা সুন্নত হয় নি বলে তোমরা আত্মিকভাবে মৃত ছিলে৷ কিন্তু খ্রীষ্টের সঙ্গে ঈশ্বর তোমাদের জীবিত করলেন, আর ঈশ্বর তোমাদের সব পাপ ক্ষমা করলেন৷ 14 ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করার ফলে আমরা দায়বদ্ধ ছিলাম, সেই দায় এর মধ্যে আমাদের ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা পালনের ব্যর্থতার কথা লিখিত ছিল; কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সেই দায় মকুব করলেন৷ ঈশ্বর সেই দায় এর তালিকা নিয়ে ক্রুশের উপর পেরেক দিয়ে ঝুলিয়ে দিলেন; 15 আর এইভাবে সমস্ত (আত্মিক) শাসক ও আধিপত্যকে পরাস্ত করলেন৷ ঈশ্বর জগতকে দেখালেন য়ে তারা শক্তিহীন৷ 16 এই জন্য খাদ্য় কি পানীয় নিয়ে বা কোন পর্ব পালন, অমাবস্যা, কি বিশ্রামবারের বিশেষ দিনগুলি পালন নিয়ে কেউ য়েন তোমাদের বিচার না করে৷ 17 অতীতে ঐ সবকিছু ছিল ভবিষ্যতে যা হবে তার ছায়ার মতো, কিন্তু নতুন যা কিছু আসছিল তা খ্রীষ্টের৷ 18 যাঁরা বিনম্রতার ভান করে এবং স্বর্গদূতদের উপাসনা করে আমোদ পায় তাদের কেউ য়েন তোমাদের পুরস্কার প্রাপ্তির অয়োগ্যতা প্রমাণ না করে৷ এইরূপ ব্যক্তি সবসময়েই নিজের দেখা দর্শনের কথা বলে এবং অনাত্মিক চিন্তার দ্বারা বিনা কারণে বিনাশরূপ অহঙ্কারে ফুলে ওঠে৷ 19 এরূপ লোকেরা খ্রীষ্টকে ধরে থাকে না, যিনি দেহের মস্তক স্বরূপ৷ সমস্ত দেহটাই খ্রীষ্টের উপর নির্ভরশীল এবং খ্রীষ্টের জন্যই দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি পরস্পরকে যত্ন করে ও পরস্পরের জন্য চিন্তা করে৷ এতেই দেহ শক্তিশালী হয় এবং দেহকে একসাথে ধরে রাখে, আর এইভাবে ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দেহ বৃদ্ধিলাভ করে৷ 20 খ্রীষ্টের সঙ্গে তোমাদের মৃত্যু হয়েছে বলে তোমরা জগতের প্রাথমিক শিক্ষার অধীন নও৷ তবু এমনভাবে চলছ য়েন মনে হচ্ছে তোমরা এখনও জগতের লোক৷ তোমরা জগতের এইসব নিয়ম কানুন এখনও মেনে চলছ য়েমন: 21 ‘ওটা খাওয়া ঠিক নয়,’ ‘ওটা চোখে দেখবে না,’ ‘ওটা ছুঁযো না’ ইত্যাদি৷ 22 এসব নিয়ম কানুনের অন্তর্গত বস্তু (বিষয়) ব্যবহারে ভয় পায় এবং এগুলি গড়ে উঠেছে মানুষের আদেশ ও শিক্ষার উপর ভিত্তি করে৷ 23 ঈশ্বরের নির্দেশ নয়, এসব নিয়ম কানুন হল মানুষের গড়া ধর্মের অংশ ও জ্ঞানপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় এবং যাতে বিনয়ের ভান ও কৃচ্ছসাধন করার কথা থাকে৷ কিন্তু এইসব নিয়ম কানুন মানুষের মধ্যে য়ে পাপ প্রবৃত্তিগুলি থাকে সেগুলিকে বশে আনতে পারে না৷
1 খ্রীষ্টের সঙ্গে তোমরা মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছ; তাই স্বর্গীয় বিষয়গুলির জন্য চেষ্টা কর, য়েখানে খ্রীষ্ট ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে বসে আছেন৷ 2 সেই স্বর্গীয় বিষয়সকলের কথা ভাব, য়ে সকল বিষয়বস্তু জগতে আছে সেগুলির বিষয় নয়৷ 3 কারণ তোমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে; আর তোমাদের নতুন জীবন খ্রীষ্টের সঙ্গে ঈশ্বরের মধ্যে নিহিত আছে৷ 4 খ্রীষ্ট যখন ফিরে আসবেন, তখন তোমরাও তাঁর সঙ্গে মহিমামণ্ডিত হয়ে প্রকাশিত হবে৷ 5 তাই তোমাদের জাগতিক স্বভাব থেকে সব মন্দ বিষয় দূর করে দাও৷ য়েমন: য়ৌনপাপ, অপবিত্রতা, অশুচি চিন্তার বশবর্তী হওয়া, মন্দ বিষয়ের লালসা করা এবং লোভ৷ লোভ এক প্রকার প্রতিমা পূজা৷ 6 এইসবের জন্য ঈশ্বরের ক্রোধ হচ্ছে৷ 7 তোমাদের অতীতের পাপময় জীবনে তোমরা সেইসব মন্দ কাজে লিপ্ত ছিলে৷ 8 কিন্তু এখন তোমাদের জীবন থেকে রাগ, ক্রোধ, ঘৃণাপূর্ণ অনুভূতি, অপমানসূচক আচরণ এবং লজ্জাজনক আলাপ সব দূর করে দাও৷ 9 পরস্পরের কাছে মিথ্যা বোলো না, কারণ তোমরা তোমাদের পুরানো পাপময় সত্ত্বাকে তার সমস্ত মন্দ কর্ম সমেত ত্যাগ করেছ৷ 10 তোমরা নতুন সত্ত্বাকে পরিধান করেছ; এই নতুন জীবনে তোমাদের নতুন করে তৈরী করা হচ্ছে৷ তোমাদের যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমরা তাঁর মতো হয়ে উঠছ, এই নতুন জীবনের মাধ্যমে তোমরা ঈশ্বরের সত্য পরিচয় পাচ্ছ৷ 11 এই নতুন জীবনে ইহুদী কি গ্রীক এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ যাদের সুন্নত হয়েছে আর যাদের সুন্নত হয় নি, অথবা কোন বিদেশী বা বর্বর এদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ ক্রীতদাস বা স্বাধীনের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ খ্রীষ্ট ঐসব বিশ্বাসীদের মধ্যে বাস করেন৷ একমাত্র খ্রীষ্টই হলেন প্রযোজনীয় বিষয়৷ 12 ঈশ্বর তোমাদের মনোনীত করেছেন ও তোমাদের তাঁর পবিত্র লোক বলে নিরূপণ করেছেন৷ তিনি তোমাদের ভালবাসেন, তাই এইসব ভাল গুণগুলি পরিধান করে সহানুভূতিপূর্ণ, দয়ালু, নম্র, ভদ্র এবং ধৈর্য্যবান হও৷ 13 পরস্পরের প্রতি ক্রুদ্ধ ভাব রেখো না কিন্তু একে অপরকে ক্ষমা কর৷ কেউ যদি তোমার বিরুদ্ধে কোন অন্যায় করে, তবে একে অপরকে ক্ষমা করো৷ অপরকে ক্ষমা করো, কারণ প্রভু তোমাদের ক্ষমা করেছেন৷ 14 এসব তো করবেই কিন্তু সবার ওপরে পরস্পরের প্রতি ভালবাসা রেখো, সেইভালোবাসা তোমাদের একসূত্রে গাঁথে আর পরিপূর্ণতা দেয়৷ 15 প্রভু খ্রীষ্ট য়ে শান্তি দেন তা তোমাদের অন্তরের সমস্তচিন্তাকে সংযত রাখুক৷ তোমরা তো সেই কারণেই শান্তি পেতে একদেহে আহূত হয়েছ৷ তোমরা সব সময় কৃতজ্ঞ থাক৷ 16 খ্রীষ্টের শিক্ষা তোমাদের অন্তরে প্রচুর পরিমাণে থাকুক৷ সকল বিজ্ঞতা ব্যবহার করে পরস্পরকে বলিষ্ঠ কর এবং শিক্ষা দাও৷ কৃতজ্ঞচিত্তে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গীতসংহিতার গীত, প্রশংসার গীত এবং আত্মিক গীত গাও৷ 17 কথায় বা কাজে যা কিছু করো, সবই প্রভুর নামে কর এবং পিতা ঈশ্বরকে যীশুর মাধ্যমে ধন্যবাদ দাও৷ 18 স্ত্রীরা, তোমরা তোমাদের স্বামীর অনুগতা থাক, এটাই হবে প্রভুর অনুসারীদের উপযুক্ত কাজ৷ 19 স্বামীরা, তোমরা তোমাদের স্ত্রীকে ভালবাস, তাদের সঙ্গে মধুর ব্যবহার করো৷ 20 সন্তানরা, তোমরা সব বিষয়ে তোমাদের বাবা-মার বাধ্য হযো; এতে প্রভু সন্তুষ্ট হন৷ 21 পিতারা তোমরা তোমাদের সন্তানদের বিরক্ত করো না, তাদের খুশী মতো চলতে না পারলে তারা উত্সাহ হারাবে৷ 22 ক্রীতদাসরা, তোমাদের মনিবদের সব বিষয়ে মান্য করবে৷ তাঁরা দেখুন বা না দেখুন তোমরা সব সময় তাঁদের বাধ্য থেকো এতে তোমরা মানুষকে খুশী করতে নয় কিন্তু প্রভুকেই খুশী করতে চেষ্টা করছ, সুতরাং সততার সঙ্গে মনিবদের মান্য করো, কারণ তোমরা প্রভুকে সম্মান করো৷ 23 তোমরা সমস্ত কাজ আন্তরিকতার সঙ্গে করো৷ মানুষের জন্য য়ে করছ তা নয়, কিন্তু প্রভুর কাজ মনে করেই কাজ করে যাও৷ 24 মনে রেখো, প্রভুর কাছ থেকেই তোমরা তার পুরস্কার পাবে. ঈশ্বর তাঁর আপনজনদের দেবেন বলে য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তোমরা তার অংশীদার হবে৷ তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টেরই সেবা করছ৷ 25 মনে রেখো, কেউ যদি অন্যায় কাজ করে, সেই ব্যক্তিকে তার অন্যায় কাজের জন্য শাস্তি পেতে হবে৷ প্রভু সকলকেই সমভাবে বিচার করেন৷
1 মনিবেরা, তোমরা তোমাদের ক্রীতদাসদের প্রতি ন্যায় ও সত্ ব্যবহার করো৷ মনে রেখো, স্বর্গে তোমাদেরও এক প্রভু আছেন৷ 2 তোমরা প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাক; সর্বদা সজাগ থেকো এবং প্রার্থনার সময়ে প্রথমে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিও৷ 3 এই সঙ্গে আমাদের জন্যও প্রার্থনা করো, প্রার্থনা করো য়েন ঈশ্বর আমাদের জন্য অপরের কাছে সুসমাচার প্রচারের সুয়োগ করে দেন, প্রার্থনা করো আমরা য়েন সেই নিগূঢ়তত্ত্ব, যা ঈশ্বর খ্রীষ্টের সম্বন্ধে প্রকাশ করেছেন, তাও লোকদের জানাতে পারি৷ এই সত্য প্রচারের জন্যই আমি আজ কারাগারে আছি৷ 4 প্রার্থনা করো য়েন পরিষ্কার করে সেই সত্য লোকদের কাছে আমি তুলে ধরতে পারি, এটাই আমার কর্তব্য৷ 5 যাঁরা খ্রীষ্টেবিশ্বাসী নয় তাদের সঙ্গে বুদ্ধিপূর্বক ব্যবহার করো; আর সমস্ত সুয়োগের সদ্বব্যবহার করো৷ 6 তোমাদের কথাবার্তা সব সময় য়েন বিজ্ঞতা ও মাধুর্য়পূর্ণ হয়, তাহলে প্রত্যেক মানুষকে তোমরা যথাযথভাবে উত্তর দিতে পারবে৷ 7 তুখিক খ্রীষ্টেতে আমার স্নেহের ভাই, তিনি প্রভুতে একজন বিশ্বস্ত সেবক ও আমার সহকর্মী৷ তিনি গিয়ে আমার প্রতি কি ঘটছে তার সব তোমাদের জানাবেন৷ 8 আমি তোমাদের কাছে তাকে এই উদ্দেশ্যেই পাঠালাম৷ আমি চাই য়েন তোমরা জানতে পার আমরা সকলে কেমন আছি৷ আমি তাকে পাঠালাম, য়েন তিনি গিয়ে তোমাদের মনে ভরসা দেন৷ 9 আমি ওনীষিমাসের সঙ্গে তাকে পাঠালাম৷ ওনীষিমাস হলেন খ্রীষ্টেতে একজন বিশ্বস্ত ও প্রিয় ভাই৷ তিনি তো তোমাদের দলেরই একজন৷ তুখিক ওনীষিমাস গিয়ে এখানকার সব সমাচার তোমাদের দেবেন৷ 10 আরিষ্টার্খ তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, তিনি আমার এখানে কারাগারের মধ্যে আছেন আর বার্ণবার খুড়তুতো ভাই মার্কও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ মার্কের ব্যাপারে এর আগেই তোমাদের জানিয়ে ছিলাম৷ তিনি ওখানে গেলে তাঁকে সাদরে গ্রহণ করো৷ 11 যুষ্ট (যাকে যীশু বলেও ডাকা হয়) তিনিও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ ইহুদীদের মধ্য থেকে যাঁরা খ্রীষ্টবিশ্বাসী হয়েছেন, তাদের মধ্যে কেবল এঁরাই আমার সঙ্গে ঈশ্বরের রাজ্য বিস্তারের জন্য কাজ করছেন৷ এঁরা আমার মনে আনন্দ দিয়েছেন৷ 12 ইপাফ্রাও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন; তিনি তো তোমাদেরই লোক, তিনি খ্রীষ্ট যীশুর একজন সেবক৷ তিনি সব সময় তোমাদের জন্য ব্যাকুলভাবে প্রার্থনা করেন য়েন তোমরা ঈশ্বরের ইচ্ছায় আত্মিকভাবে বৃদ্ধিলাভ কর, সিদ্ধ হও ও ঈশ্বরের অভিপ্রেত সব কিছুতে তোমরা পূর্ণ হও৷ 13 আমি তাঁর বিষয়ে এই সাক্ষ্য দিচ্ছি য়ে তিনি তোমাদের জন্য ও লায়দিকেয়া এবং হিয়রাপলির খ্রীষ্ট-বিশ্বাসীদের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন৷ 14 আমাদের প্রিয় চিকিত্সক লূক ও দীমা তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 15 তোমরা লায়দিকেযা সমবিশ্বাসী ভাই ও বোনেদের এবং নুম্ফাকে ও তার গৃহে য়ে মণ্ডলী সমবেত হন তাঁদের সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 16 এই চিঠি পড়ার পর তোমরা এই চিঠিটি লায়দিকেয়ার মণ্ডলীতে পাঠিয়ে দিও এবং নিশ্চিতভাবে দেখো যাতে ঐ মণ্ডলীকে তা পড়ে শোনানো হয়৷ আমি লায়দিকেয়ার মণ্ডলীকে য়ে চিঠি লিখছি তা তোমরাও পাঠ করো৷ 17 আর্খিপ্পকে বোলো, ‘প্রভু তোমাকে য়ে কাজ দিয়েছেন তা নিশ্চয় করে শেষ করো৷’ 18 আমি পৌল, নিজে হাতে লিখে তোমাদের আমার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি৷ আমাকে স্মরণে রেখো, আমি কারাগারে বন্দী অবস্থায় আছি৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের সহবর্তী হোক্৷
1 পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে থিষলনীকীয়ার য়ে মণ্ডলী যুক্ত, তাদের কাছে পৌল, সীল ও তীমথিয় আমরা এই চিঠি লিখছি৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের ওপর বিরাজ করুক৷ 2 আমরা সর্বদা প্রার্থনার সময় তোমাদের স্মরণ করে থাকি এবং তোমাদের সকলের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 3 বিশ্বাসের দরুন ও প্রেমের বশবর্তী হয়ে য়ে সব কাজ তোমরা করেছ এবং খ্রীষ্ট যীশুতে য়ে প্রত্যাশা রয়েছে তাতে উত্সাহিত হয়ে তোমরা য়ে ধৈর্য্য ধরছ, সে সব কথা স্মরণ করে আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই৷ 4 ঈশ্বর প্রেমে আশ্রিত ভাই ও বোনেরা, আমরা জানি তিনি তোমাদের আপন করে নেবার জন্য মনোনীত করেছেন৷ 5 আমাদের দ্বারা প্রচারিত সুসমাচার কেবলমাত্র কথার মাধ্যমে তোমাদের কাছে আসে নি, কিন্তু তা পরাক্রম, পবিত্র আত্মা ও গভীর বিশ্বাসের মাধ্যমে এসেছিল৷ তোমরা তা জান, য়ে আমরা তোমাদের মধ্যে কি ধরণের জীবনযাপন করেছিলাম৷ তোমাদের মঙ্গলের জন্যই আমরা ঐভাবে চলেছিলাম; 6 আর তোমরা আমাদের ও প্রভুর অনুকরণ করেছিলে৷ তোমরা অনেক নির্য়াতন ভোগের মধ্যেও সেই শিক্ষা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলে৷ পবিত্র আত্মাই সেই আনন্দ তোমাদের দিয়েছিলেন; 7 এর ফলস্বরূপ তোমরা মাকিদনিয়া ও আখায়ার সমস্ত বিশ্বাসী লোকের কাছে আদর্শ স্বরূপ হয়েছ৷ 8 কেবলমাত্র মাকিদনিয়া ও আখায়াতে তোমাদের কাছ থেকে প্রভুর বাক্য ছড়িয়ে পড়েছে তা নয়; ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের বিশ্বাসের কথা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে৷ এই জন্য তোমাদের বিশ্বাসের সম্পর্কে আমাদের কিছু বলার প্রযোজন নেই; 9 কারণ সব জায়গার মানুষ আমাদের জানাচ্ছে কিভাবে তোমরা আমাদের অভ্য়র্থনা জানিয়েছিলে এবং কিভাবে তোমরা মূর্তি পূজা ছেড়ে জীবন্ত সত্য ঈশ্বরের সেবার দিকে মন দিয়েছিলে, 10 আর ঈশ্বর তাঁর য়ে পুত্রকে মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত করেছেন তাঁর ফিরে আসার অপেক্ষায় আছ৷ যীশুই আমাদের ঈশ্বরের আসন্ন ক্রোধ থেকে রক্ষা করবেন৷
1 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা নিজেরাই জান, তোমাদের কাছে আমাদের যাওয়া ব্যর্থ হয় নি৷ 2 তোমরা একথাও জান য়ে, তোমাদের ওখানে যাবার পূর্বে ফিলীপিতে আমাদের দুঃখভোগ করতে হয়েছিল, কারণ সেখানকার লোকরা আমাদের চরম অপমান করেছিল; কিন্তু সেখানে চরম বিরোধিতার মধ্যেও আমাদের ঈশ্বর সাহসে বুক বাঁধতে এবং খ্রীষ্টের সুসমাচার তোমাদের কাছে ঘোষণা করতে সাহায্য করেছিলেন৷ 3 আমরা আমাদের বার্তা গ্রহণ করতে লোকেদের কাছে য়ে আবেদন রেখেছিলাম, তার মধ্যে কোন ফাঁকি বা ছলনা ছিল না৷ আমরা লোকেদের ঠকাতে চাই নি এবং তার পেছনে কোন রকম অপবিত্র উদ্দেশ্যও আমাদের ছিল না৷ 4 বরং আমরা সুসমাচার প্রচার করি কারণ ঈশ্বর এই বার্তা প্রচার করার জন্য আমাদের পরীক্ষা করে প্রমাণসিদ্ধ বলে মনে করেছেন৷ তাই আমরা যখন প্রচার করি তখন মানুষকে সন্তষ্ট করতে নয়, বরং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতেই চেষ্টা করি, যিনি আমাদের কাজের উদ্দেশ্য পরীক্ষা করেন৷ 5 তোমরা ভাল করে জান য়ে আমরা তোমাদের কাছে তোষামোদজনক কোন বাক্য বলি নি; আর লোভকে ঢেকে রাখবার ছলনা য়ে আমরা করেছি তাও নয়; ঈশ্বরই এবিষয়ে সাক্ষী আছেন৷ 6 আমরা লোকদের কাছ থেকে কোন প্রশংসা পেতে চাই নি৷ তোমাদের বা অন্য কারোর কাছ থেকেও আমরা প্রশংসা পেতে চাই নি৷ 7 আমরা খ্রীষ্টের প্রেরিত, তাই আমরা যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম তখন কর্ত্তৃত্ব খাটিয়ে তোমাদের কাছে অনেক বড় কিছু চাইতে পারতাম; কিন্তু আমরা তোমাদের কাছে বিনযী ছিলাম৷ আমরা তোমাদের কাছে সেবিকার মতো ছিলাম য়ে তার শিশুদের যত্ন নেয়৷ 8 তোমাদের ওপর গভীর মায়া মমতা থাকাতে তোমাদের কেবল য়ে ঈশ্বরের সুসমাচারের অংশীদার করতে চেয়েছিলাম তা নয়, আমরা নিজেদের জীবনও তোমাদের জন্য উত্সর্গ করতে চেয়েছিলাম, কারণ তোমরা আমাদের খুব প্রিয় ছিলে৷ 9 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমাদের নিশ্চয় মনে আছে য়ে আমরা কতো কঠোর পরিশ্রম করেছি৷ আমরা দিনরাত কাজ করে চলেছিলাম য়েন তোমাদের কাছে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারের সময় আমরা অর্থের ব্যাপারে তোমাদের কাছে বোঝাস্বরূপ না হই৷ 10 তোমাদের মত বিশ্বাসীদের মধ্যে আমাদের জীবন কত পবিত্র, ন্যায়পরায়ণ ও নির্দোষ ছিল তা তোমরা জান; আর ঈশ্বরও জানেন তা সত্য৷ 11 তোমরা জান, পিতা য়েমন তাঁর সন্তানদের সঙ্গে ব্যবহার করেন, আমরাও তেমনি তোমাদের সঙ্গে ব্যবহার করেছি৷ 12 আমরা তোমাদের উত্সাহ যুগিয়েছি, তোমাদের আশ্বাস দিয়েছি এবং ঈশ্বরের জন্য য়োগ্য জীবনযাপন করতে অনুপ্রাণিত করেছি, য়ে ঈশ্বর তোমাদেরকে তাঁর রাজ্যে ও মহিমায় প্রবেশ করতে আহ্বান করেছেন৷ 13 আমরা সব সময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই, কারণ তোমরা ঈশ্বরের য়ে বার্তা আমাদের কাছ থেকে পেয়েছিলে তা মানুষের বার্তা বলে নয় বরং ঈশ্বরের বাক্য বলে গ্রহণ করেছিলে৷ সেই বাক্য সত্য-সত্যই ঈশ্বরের বাক্য ছিল এবং ঐ বার্তায় যাঁরা বিশ্বাসী তাদের সবার মধ্যে তা কাজ করছে৷ 14 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, যিহূদিয়ায় খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসী ঈশ্বরের য়ে সমস্ত মণ্ডলী আছে, তোমাদের অবস্থা তাদেরই মতো৷ যিহূদিয়ার সেই ঈশ্বরের লোকেরা অন্য ইহুদীদের কাছ থেকে য়ে রকম নির্য়াতন ভোগ করেছে, তোমরাও তোমাদের নিজেদের দেশের লোকের কাছ থেকে সেই ধরণের নির্য়াতন ভোগ করেছ৷ 15 ইহুদীরা প্রভু যীশুকে এবং ভাববাদীদের হত্যা করেছিল৷ সেই ইহুদীরা আমাদেরও নির্য়াতন করেছে৷ ঈশ্বর তাদের প্রতি খুশী নন, তারা সবারই বিপক্ষে৷ 16 আমরা অইহুদীদের শিক্ষা দিই য়েন তারা উদ্ধার পেতে পারে; কিন্তু তারা আমাদের অইহুদীদের সত্য শিক্ষা দিতে বারণ করেছে৷ সেই ইহুদীরা পূর্বে য়ে পাপ করেছে, তার ওপর আরও পাপ য়োগ করছে; আর তাই ঈশ্বরের ক্রোধ পরিপূর্ণরূপে এবং চূড়ান্তভাবে তাদের ওপর নেমে এসেছে৷ 17 ভাই ও বোনেরা, যদিও অল্প কিছুদিন হল আমরা তোমাদের থেকে আলাদা হয়েছি তবুও আমাদের মন তোমাদের দিকে পড়েছিল৷ তোমাদের আর একবার দেখার জন্য আমরা খুব উত্সুক ছিলাম৷ তাই তোমাদের কাছে আসার জন্য কঠোরভাবে চেষ্টা করেছি৷ 18 তোমাদের কাছে য়েতে আমরা সত্যিই অনেকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু শয়তান আমাদের বাধা দিল৷ 19 তোমরাই আমাদের প্রত্যাশা, আনন্দ ও গৌরবের মুকুট৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিনে এই হবে আমাদের গর্ব৷ 20 সত্য সত্য তোমরাই আমাদের মহিমা ও আনন্দ৷
1 যখন আমরা আর ধৈর্য্য ধরতে পারলাম না তখন আমরা আথীনীতে একাই থেকে য়েতে মনস্থ করলাম৷ 2 তাই আমরা তীমথিয়কে তোমাদের কাছে পাঠালাম৷ তীমথিয় আমাদের ভাই, খ্রীষ্ট সম্পর্কে সুসমাচার প্রচারে সে আমাদের সাহায্য করে৷ আমরা তাকে পাঠিয়েছিলাম যাতে সে তোমাদের বিশ্বাসকে দৃঢ় করতে ও তোমাদের উত্সাহ দিতে পারে, 3 যাতে তোমাদের য়ে সব শারীরিক ও মানসিক ক্লেশের মধ্য দিয়ে য়েতে হচ্ছে তাতে তোমরা হতাশ না হও৷ তোমরা নিজেরাই জান য়ে এসব শারীরিক ও মানসিক দুঃখকষ্ট আমাদের জীবনে ভোগ করতেই হবে৷ 4 আমরা যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম, তখন তোমাদের বলেছিলাম য়ে আমাদের সকলকে দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে য়েতে হবে৷ তোমরা জান য়ে আমরা য়েমন বলেছিলাম তেমনিই হয়েছে৷ 5 আর এইজন্য আর ধৈর্য্য ধরতে না পারাতে আমি তীমথিয়কে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে জানতে চেয়েছিলাম য়ে তোমরা বিশ্বাসে স্থির আছ কি না৷ আমার মনে ভয় ছিল য়ে শয়তান মানুষকে নানা প্রলোভনে ফেলে, সে তোমাদের পরাজিত করেছে; তা করলে আমাদের সমস্ত পরিশ্রম পণ্ড হয়ে য়েত৷ 6 তীমথিয় তোমাদের কাছ থেকে ফিরে এসে তোমাদের বিশ্বাস ও ভালবাসার শুভ সংবাদ আমাদের দিয়েছে৷ তীমথিয় জানিয়েছে য়ে তোমরা সব সময় আনন্দের সঙ্গে আমাদের মনে রেখেছ এবং আমাদের দেখবার জন্য তোমরা বড়ই ব্যগ্র৷ ঐ একই কথা আমরাও বলতে চাই - তোমাদের দেখবার জন্য আমরাও উত্সুক৷ 7 তাই ভাই ও বোনেরা, তোমরা বিশ্বাসে প্রভুতে স্থির আছ জেনে শত দুর্দশা ও কষ্টের মধ্যেও আমরা সান্ত্বনা পেয়েছি৷ 8 তোমরা প্রভুতে সুস্থির আছ জেনে আমরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম৷ 9 তোমাদের জন্য ঈশ্বরের সামনে আমাদের আনন্দের শেষ নেই, তাই আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই; কিন্তু আমরা য়ে পরিমাণে আনন্দ পাই তার জন্য ঈশ্বরকে যথেষ্ট ধন্যবাদ দিতে পারি না৷ 10 আমরা তোমাদের জন্য দিনরাত খুব প্রার্থনা করে চলেছি৷ আমরা প্রার্থনা করি য়েন আমরা তোমাদের ওখানে য়েতে পারি ও তোমাদের বিশ্বাসকে সুদৃঢ় করার জন্য তোমাদের সব ত্রুটি দূর করতে পারি৷ 11 আমরা প্রার্থনা করছি য়েন আমাদের ঈশ্বর ও পিতা স্বয়ং এবং আমাদের প্রভু যীশু তোমাদের কাছে যাবার জন্য আমাদের পথ সুগম করেন৷ 12 আমরা প্রার্থনা করছি য়েন প্রভু তোমাদের প্রেম বৃদ্ধি করেন৷ য়েন তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা উপচে পড়ে এবং আমরা য়েমন তোমাদের ভালবাসি তোমরাও তেমনি সমস্ত লোকদের ভালবাস৷ 13 আমরা প্রার্থনা করছি য়েন তোমাদের হৃদয় সবল হয়৷ তাহলে আমাদের প্রভু যীশু যখন তাঁর পবিত্র দূতদের সঙ্গে নিয়ে ফিরে আসবেন, তখন তোমরা তাঁর সামনে পবিত্র ও নির্দোষ অবস্থায় দাঁড়াতে পারবে৷
1 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমাদের কাছে আমার আরও কিছু বলার আছে৷ কি করে ঈশ্বরকে সন্তষ্ট করে জীবনযাপন করতে হয়, এ বিষয়ে তোমরা আমাদের কাছে শিক্ষা পেয়েছ; আর সেইভাবেই তোমরা চলেছ৷ বেশ, এখন চাইছি ও তোমাদের উত্সাহ দিয়ে বলছি য়ে তোমরা আরো বেশী করে সেইভাবে চলো৷ 2 তোমরা শুনেছ এবং জান তোমাদের কি করণীয়; প্রভু যীশুর কাছ থেকে অধিকার পেয়ে সেই শিক্ষা তোমাদের দিয়েছিলাম৷ 3 ঈশ্বর চান য়ে তোমরা পবিত্র হও ও সবরকম য়ৌন পাপ থেকে দূরে থাক৷ 4 ঈশ্বর চান তোমরা পুরুষরা প্রত্যেকে জানো কিভাবে পবিত্র ও সম্মানজনকভাবে নিজের স্ত্রীর সাথে বাস করতে হয়৷ 5 বিজাতীয়রা যাঁরা ঈশ্বরকে জানে না তারা য়েভাবে কামনা বাসনা দ্বারা চালিত হয়, সেইভাবে চলো না৷ 6 এই ব্যাপারে কেউ য়েন তার বিশ্বাসী ভাইকে না ঠকায়, কারণ যাঁরা ঐভাবে চলে প্রভু তাদের দণ্ড দেবেন৷ এই বিষয়ে এর আগেই তোমাদের জানিয়েছি ও তোমাদের সাবধান করে দিয়েছি৷ 7 কারণ ঈশ্বর আমাদের অশুচিভাবে চলার জন্য নয় কিন্তু পবিত্র হবার উদ্দেশ্যেই আহ্বান করেছেন৷ 8 তাই, য়ে এই শিক্ষা অনুসারে চলতে অস্বীকার করে সে মানুষকে নয় কিন্তু ঈশ্বরকেই অমান্য করে, য়ে ঈশ্বর আমাদের পবিত্র আত্মা দান করেন৷ 9 খ্রীষ্টেতে তোমাদের য়ে বিশ্বাসী ভাই ও বোনেরা আছে তাদের য়ে ভালবাসায় ভালবাসতে হবে, সে বিষয়ে তোমাদের কাছে লেখার দরকার নেই৷ কারণ পরস্পরকে ভালবাসার শিক্ষা তো তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকেই পেয়েছ৷ 10 বাস্তবিক তোমরা মাকিদনিয়ার সমস্ত ভাই ও বোনেদের ভালবাস৷ প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এখন আমরা তোমাদের উত্সাহ দিয়ে বলছি য়ে তোমরা আরো গভীরভাবে পরস্পরকে ভালবাসবে৷ 11 শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আপ্রাণ চেষ্টা কর৷ এবিষয়ে য়েমন তোমাদের বলেছি তেমনিভাবে নিজের নিজের কাজ যত্ন সহকারে কর, নিজের হাতে কাজ করে যাও৷ 12 এর ফলে মণ্ডলীর বাইরের মানুষ তোমাদের জীবন ধারা দেখে তোমাদের সম্মান করবে এবং কারো ওপর তোমাদের নির্ভর করতে হবে না৷ 13 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, যাঁরা মারা গিয়েছে তাদের সম্পর্কে তোমাদের জানাতে চাই৷ যাদের কোন প্রত্যাশা নেই, তাদের মতো তোমরা শোকার্ত হও এ আমরা চাই না৷ 14 আমরা বিশ্বাস করি য়ে যীশু মারা গিয়েছিলেন এবং যীশু বেঁচে উঠেছেন৷ যীশু যখন ফিরে আসবেন তখন য়ে সব খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর মৃত্যু হয়েছে, ঈশ্বর খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাদেরও উত্থাপিত করে খ্রীষ্টের সঙ্গে ফিরিয়ে আনবেন৷ 15 আমরা যা বলছি তা আমরা প্রভুর কাছ থেকে তাঁর বাণীরূপে জানতে পেরে বলছি৷ আমরা যাঁরা এখন জীবিত আছি তারা প্রভুর আগমনের সময়েও জীবিত থাকব, আর প্রভুর কাছে চলে যাব, কিন্তু কোনভাবেই সেই মৃতদের আগে যাব না৷ 16 কারণ যখন প্রধান স্বর্গদূতের গন্ভীর আদেশ ও ঈশ্বরের তূরীধ্বনি হবে, প্রভু নিজে স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন৷ তখন য়ে সব খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের মৃত্যু হয়েছে তারা প্রথমে জেগে উঠবে৷ 17 তারপর আমরা যাঁরা তখনও পৃথিবীতে জীবিত থাকব, প্রভুর সঙ্গে আকাশে সাক্ষাত্ করতে তাদের সাথে আমাদেরও মেঘের মধ্যে তুলে নেওয়া হবে; আর আমরা প্রভুর সঙ্গে চিরকাল থাকব৷ 18 সুতরাং এইসব কথার দ্বারা তোমরা পরস্পরকে সান্ত্বনা দিও৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ কোন কাল ও সময়ের বিষয়ে তোমাদের কিছু লেখার প্রযোজন নেই৷ 2 তোমরা নিজেরাই ভালো করে জানো, রাতে য়েমন চোর চুপিচুপি আসে, তেমনি প্রভুর দিন হঠাত্ আসবে৷ 3 লোকে যখন বলে, ‘আমাদের শান্তি আছে এবং আমরা নিরাপদে আছি;’ ঠিক এমন সময় তাদের ওপর হঠাত্ চরম বিনাশ নেমে আসবে৷ সন্তান প্রসবের আগে য়েমন নারীর হঠাত্ প্রসব বেদনা শুরু হয়, তেমনি হঠাত্ তাদের উপর বিনাশ এসে পড়বে; আর তারা কোনভাবেই পালিয়ে য়েতে পারবে না৷ 4 কিন্তু ভাই ও বোনেরা, তোমরা তো আর অন্ধকারে বাস করছ না য়ে, সেই দিন চোরের মতো তোমাদের ওপর এসে পড়বে৷ 5 তোমরা তো সকলে মঙ্গলালোকের ও দিনের সন্তান৷ আমরা রাতেরও নই, অন্ধকারেরও নই৷ 6 তাই অন্য লোকদের মতো আমাদের হওয়া উচিত নয়৷ আমরা জেগে থাকব ও আত্মসংযম রক্ষা করব৷ 7 কারণ যাঁরা ঘুমোয়, তারা রাতেই ঘুমোয়; যাঁরা মদ্যপায়ী, তারা রাতেই মাতাল হয়৷ 8 কিন্তু আমরা দিনের লোক তাই এস আমরা নিজেদের দমনে রাখি, আমাদের বুকটা য়েন বিশ্বাস ও প্রেমের ঢালে ঢাকা থাকে; আর মাথায় য়েন পরিত্রাণের আশারূপী শিরস্ত্রাণ থাকে৷ 9 কারণ ঈশ্বর আমাদের তাঁর ক্রোধের পাত্ররূপে মনোনীত করেন নি, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পরিত্রাণ করার জন্যই আমাদের মনোনীত করেছেন৷ 10 যীশু আমাদের জন্য প্রাণ দিলেন য়েন আমরা বেঁচে থাকি বা মৃত অবস্থায় থাকি, আমরা তাঁর সঙ্গেই জীবিত থাকি৷ 11 এইজন্য তোমরা এখন য়েমন করে চলেছ তেমনই পরস্পরকে সান্ত্বনা দাও ও পরস্পরকে গড়ে তোল৷ 12 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা তোমাদের বলছি, যাঁরা তোমাদের মধ্যে পরিশ্রম করে, যাঁরা তোমাদের প্রভুতে পরিচালনা করে, যাঁরা তোমাদের শিক্ষা দেয়, তাদের তোমরা সম্মান করো৷ 13 তাদের কাজের জন্য তাদের সম্মান করো সমস্ত অন্তর দিয়ে তাদের ভালবেসো এবং পরস্পরের মধ্যে শান্তি বজায় রেখো৷ 14 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা তোমাদের অনুরোধ করছি, যাঁরা অলস তাদের সাবধান করে দাও৷ যাঁরা ভয়ে ভীত তাদের সাহস দাও, যাঁরা দুর্বল তাদের সাহায্য কর, আর সকলের প্রতি সহিষ্ণু হও৷ 15 দেখ, য়েন অপকারের প্রতিশোধ নিতে কেউ কারোর অপকার না করে৷ তোমরা পরস্পরের মঙ্গল করতে চেষ্টা কর এবং বাকী সকলের ভাল করতে চেষ্টা কর৷ 16 সব সময় আনন্দ কর৷ 17 অবিরত প্রার্থনা কর৷ 18 সব বিষয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দাও; কারণ তোমরা যাঁরা খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিষয়ে এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছা৷ 19 পবিত্র আত্মাকে নির্বাণ করো না৷ 20 ভাববাণী অবজ্ঞা করো না৷ 21 সব কিছু পরীক্ষা কর, যা ভাল তা ধরে রাখ৷ 22 সব রকম মন্দ থেকে দূরে থাক৷ 23 শান্তির ঈশ্বর সম্পূর্ণভাবে তোমাদের শুদ্ধ আর পবিত্র রাখুন এবং তোমাদের সম্পূর্ণ সত্ত্বা আত্মা, প্রাণ ও দেহকে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিন পর্যন্ত তিনি নিষ্ক লঙ্ক রাখুন৷ 24 যিনি তোমাদের আহ্বান করেন, তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে তোমাদের জন্য তা করবেন, কারণ তিনি বিশ্বস্ত৷ 25 আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের জন্য প্রার্থনা করো৷ 26 সব ভাইকে পবিত্র চুম্বনের মাধ্যমে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 27 প্রভুর নামে এই শপথ কর য়ে সমস্ত খ্রীষ্টান ভাইয়ের কাছে এই চিঠি পড়ে শোনানো হবে৷ 28 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সঙ্গে থাকুক৷
1 থিষলনীকীয় মণ্ডলীর উদ্দেশ্যে আমি পৌল, সীল ও তীমথিয় এই চিঠি লিখছি৷ তোমরা আমাদের ঈশ্বর পিতা ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত৷ 2 পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের সহবর্তী হোক্৷ 3 ভাই ও বোনেরা, তোমাদের জন্য আমরা সব সময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে থাকি আর আমাদের তাই-ই করা উচিত৷ কারণ তোমাদের বিশ্বাস আশ্চর্যজনক ভাবে বৃদ্ধিলাভ করেছে ও পরস্পরের প্রতি তোমাদের য়ে ভালবাসা তা দ্রুত বৃদ্ধিলাভ করছে৷ 4 বিভিন্ন ঈশ্বরের মণ্ডলীতে তোমাদের বিষয়ে আমরা গর্ব প্রকাশ করি; কিভাবে তোমরা বিশ্বাসে বলিষ্ঠ হয়ে উঠেছ ও বিশ্বাসে স্থির আছ এসব কথা আমরা তাদের বলি৷ তোমরা অনেক নির্য়াতন সয়ে যাচ্ছো ও কষ্ট ভোগ করছ, তবুও তোমরা ধৈর্য্যে ও বিশ্বাসে স্থির আছ৷ 5 এইসব বিষয় ঈশ্বরের ন্যায়বিচারের স্পষ্ট প্রমাণ৷ ঈশ্বর চান তোমরা তাঁর রাজ্যের য়োগ্য বলে গন্য হবে; আর সেই জন্যেই তোমরা এত কষ্টভোগ করছ৷ 6 বাস্তবে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এটাই ন্যায়৷ যাঁরা তোমাদের কষ্ট দেয়, তিনি তাদেরও প্রতিফলস্বরূপ কষ্ট দেবেন৷ 7 তোমরা যাঁরা এখন কষ্ট পাচ্ছ, ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে তোমাদেরও বিশ্রাম দেবেন৷ যখন যীশু প্রকাশিত হবেন ও পরাক্রমশালী স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন, তখন এইসব ঘটবে৷ 8 যাঁরা ঈশ্বরকে জানে না এমন লোকদের শাস্তি দিতে তিনি স্বর্গ থেকে জ্বলন্ত অগ্নিসহ নেমে আসবেন৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের নির্দেশ যাঁরা পালন করে না, তিনি তাদেরও শাস্তি দেবেন৷ 9 তারা অনন্তকাল বিনাশরূপ শাস্তি ভোগ করবে৷ তারা প্রভুর সঙ্গে থাকতে পারবে না এবং তাঁর মহাপরাক্রমের মহিমা থেকে তাদের দূরে রাখা হবে৷ 10 সেইদিন যীশু তাঁর পবিত্র লোকদের দ্বারা মহিমান্বিত হতে আসবেন, আর যাঁরা যীশুতে বিশ্বাস করেছে তারা সবাই যীশুতে চমত্কৃত হবে৷ বিশ্বাসী ভাই ও বোনেরা, তোমরাও সেই বিশ্বাসীবর্গের মধ্যে থাকবে, কারণ আমরা য়ে বাণী তোমাদের বলছি তাতে তোমরা বিশ্বাস করেছ৷ 11 আর এই জন্যই আমরা তোমাদের জন্য সর্বদা প্রার্থনা করে চলেছি, য়েন ঈশ্বর য়ে পবিত্র জীবনযাপন করার উদ্দেশ্যে তোমাদের আহ্বান করেছেন তার য়োগ্য বলে বিবেচিত হও৷ আরো প্রার্থনা করি য়েন তাঁর শক্তি দ্বারা তিনি তোমাদের সদিচ্ছায় পূর্ণ সমস্ত বাসনা পূর্ণ করেন ও তোমাদের বিশ্বাস হতে উত্পন্ন প্রত্যেক কাজকে আশীর্বাদ করেন; 12 য়েন আমাদের ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ অনুসারে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নাম তোমাদের মাধ্যমে মহিমান্বিত হয় আর তোমরাও তাতে মহিমান্বিত হও৷ সেই মহিমা আমাদের ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ থেকে লাভ হয়৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমন সম্পর্কে আমি তোমাদের কিছু বলতে চাই৷ আমরা যখন একসঙ্গে তাঁর সাক্ষাতে মিলিত হতে যাব সেই সময়টা সম্পর্কে তোমাদের কিছু জানাতে চাই৷ 2 আমি অনুরোধ করি প্রভুর দিন এসে গেছে শুনে তোমাদের বিবেচনা বোধ হারিও না, বা বিচলিত হযো না৷ কেউ কেউ হয়তো ভাববাণী করে বা বিশেষ বার্তার মাধ্যমে তা বলতে পারে৷ আমাদের কাছ থেকে পাওয়া এ সম্পর্কে কোন চিঠি কেউ পড়তে পারে৷ 3 দেখ কেউ য়েন এ বিষয়ে তোমাদের কোনভাবে প্রতারিত করতে না পারে৷ সেই দিন আসার আগে পৃথিবীতে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা যাবে৷ সেই পাপ পুরুষ ধ্বংস হওয়ায় যার ভাগ্য়ে লেখা আছে, সে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত সেই দিন আসবে না৷ 4 যা কিছু ঈশ্বর নামে আখ্যাত ও উপাসনার য়োগ্য সে তার বিরোধিতা করবে ও সবার উপরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে৷ সেই পাপ পুরুষ এমনকি ঈশ্বরের মন্দিরে গিয়ে সেখানে আসন করে নেবে এবং ঘোষণা করবে য়ে সে ঈশ্বর৷ 5 তোমাদের কি মনে পড়ে না, এমন য়ে ঘটবে তার বিবরণ আমি তোমাদের কাছে থাকার সময় জানিয়েছিলাম! 6 তোমরা জান, কোন শক্তি ঐ পাপ পুরুষকে বাধা দিয়ে রাখছে যাতে সে নিরূপিত সময়ে প্রকাশ পায়৷ 7 আমি এসব বলছি কারণ মন্দতার সেই গোপন শক্তি এখনই জগতে কাজ করে চলেছে৷ কিন্তু একজন রয়েছেন যিনি এই শক্তিকে প্রতিরোধ করে আসছেন, তিনি তা করতেই থাকবেন যতক্ষণ না তা দূর হয়৷ 8 তারপর সেই পাপপুরুষ প্রকাশিত হবে; আর প্রভু তাঁর মুখের তেজোময় নিঃশ্বাস এবং আবির্ভাবের মহিমা দ্বারা সেই পাপ পুরুষকে ধ্বংস করবেন৷ 9 শয়তানের শক্তিতে সেই পাপ পুরুষ আসবে৷ সে মহাপরাক্রমের সাহায্যে নানা ছলনামযী অলৌকিক কাজ, অদ্ভুত লক্ষণ ও চিহ্ন দেখাবে৷ 10 যাঁরা বিনাশপথের যাত্রী তাদের ভ্রান্তিজনক বিষয়ে সে ভোলাবে৷ পরিত্রাণ পাবার জন্য য়ে সত্য রয়েছে তা ভালবাসতে যাঁরা অস্বীকার করছে, তারাই সেই বিনাশপথের যাত্রী৷ 11 তাই ঈশ্বর ওদের মধ্যে এমন এক শক্তি পাঠিয়েছেন, যাতে ওরা ভুল কাজ করে৷ 12 তাই যাঁরা সত্যে বিশ্বাস করল না, ও মন্দ বিষয়ে আনন্দ করল তারা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে৷ 13 প্রভুর প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমাদের জন্য আমাদের সর্বদা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত৷ এইজন্য ঈশ্বর প্রথম থেকেই তোমাদের মনোনীত করেছিলেন যাতে আত্মায় পবিত্র হয়ে এবং সত্যকে বিশ্বাস সহকারে গ্রহণ করার মাধ্যমে তোমরা পরিত্রাণ পাও৷ 14 য়ে সুসমাচার আমরা প্রচার করেছিলাম তার মাধ্যমে ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছিলেন, যাতে তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মহিমার সহভাগী হতে পার৷ 15 তাই ভাই ও বোনেরা, শক্ত হয়ে দাঁড়াও, আর আমরা তোমাদের য়ে শিক্ষা দিয়েছি সে বিষয়েও বিশ্বাসে স্থির থাক৷ মৌখিকভাবে ও পত্রের দ্বারা এইসব বিষয়ে আমরা তোমাদের শিক্ষা দিয়েছিলাম৷ 16 আমরা প্রার্থনা করি য়ে স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ও ঈশ্বর পিতা তোমাদের সান্ত্বনাদান করুন ও যা কিছু সত্ কাজ তোমরা কর ও বল তার জন্য শক্তি দান করুন৷ ঈশ্বর আমাদের ভালোবেসেছিলেন এবং তাঁর অনুগ্রহে আমাদের এক আশা ও সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, যা চিরকাল বিরাজ করবে৷ 17
1 সবশেষে এই কথা বলছি, আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের জন্য প্রার্থনা করো৷ প্রার্থনা করো য়েন প্রভুর শিক্ষা দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করে, প্রার্থনা করো য়েন লোকে সেই শিক্ষার সম্মান করে, য়েমন সম্মান তোমরা করেছিলে৷ 2 প্রার্থনা করো য়েন আমরা মন্দ ও খারাপ লোকদের হাত থেকে রক্ষা পাই৷ সবাই তো আর প্রভুকে বিশ্বাস করে না৷ 3 কিন্তু প্রভু বিশ্বস্ত, তিনিই তোমাদের শক্তি দেবেন ও মন্দ শক্তির (শয়তানের) হাত থেকে রক্ষা করবেন৷ 4 তোমাদের সম্বন্ধে প্রভুতে আমাদের এই দৃঢ় বিশ্বাস আছে য়ে, আমরা যা যা আদেশ করেছি সেই সমস্ত তোমরা পালন করছ ও আমরা জানি এর পরেও তা করবে৷ 5 আমরা প্রার্থনা করছি য়েন প্রভু তোমাদের হৃদয়কে ঈশ্বরের ভালবাসার পথে ও খ্রীষ্টের ধৈর্য্যের পথে চালনা করেন৷ 6 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি য়ে, কোন ভাই যদি অলসভাবে দিন কাটায় এবং তোমরা আমাদের কাছ থেকে য়ে শিক্ষা পেয়েছ, সেই মত না চলে তবে তার কাছ থেকে দূরে থাক৷ 7 তোমরা নিজেরা জান য়ে আমরা য়েমন চলি, তোমাদের তেমনি চলা উচিত৷ আমরা যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম, আমরা অলস ছিলাম না৷ 8 কারো কাছ থেকে খাবার খেলে, আমরা তা মূল্য দিয়েই খেয়েছি৷ আমরা কাজ করতাম য়েন কারো বোঝাস্বরূপ না হই৷ দিনে বা রাতে আমরা পরিশ্রম করেছি৷ 9 তোমাদের কাছ থেকে সাহায্য পাবার অধিকার আমাদের ছিল; কিন্তু আমরা নিজের হাতে কাজ করেছি, য়েন আমরা আমাদের সংস্থান নিজেরা করে নিতে পারি; আর তোমাদের কাছে নিজেদের আদর্শরূপে দেখাতে চেয়েছিলাম যাতে তোমরা আমাদের অনুসরণ করতে পার৷ 10 কারণ আমরা যখন তোমাদের কাছে ছিলাম তখন তোমাদের এই আদেশ দিতাম য়ে, যদি কেউ কাজ করতে না চায়, তবে সে য়েন না খায়৷ 11 তবু আমরা শুনতে পেয়েছি, তোমাদের মধ্যে কেউ কাজ করতে অস্বীকার করছে৷ তারা কিছুই করে না, কিন্তু তারা অন্যদের ব্যাপারে নাক গলায়৷ 12 এইরকম লোকদের আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আদেশ ও উপদেশ দিচ্ছি য়েন শান্তভাবে পরিশ্রম করে নিজেদের অন্ন নিজেরাই য়োগাড় করে৷ প্রভু যীশুর নামে আমরা বিশেষভাবে তাদের বলছি তারা য়েন এইভাবে চলে৷ 13 ভাই ও বোনেরা, সত্ কাজ করতে কখনও ক্লান্ত হযো না৷ 14 যদি কেউ এই চিঠিতে আমরা যা লিখেছি, তা না মানতে চায়, তবে তাকে চিনে রাখো, আর তার কাছ থেকে দূরে থাক, য়েন সে লজ্জা পায়৷ 15 অথচ তার সঙ্গে শত্রুর মত আচরণ করো না, বরং তাকে ভাই বলে চেতনা দাও৷ 16 আমরা প্রার্থনা করি য়ে, শান্তির প্রভু নিজে সব সময় সব অবস্থায় তোমাদের শান্তি দান করুন৷ প্রভু তোমাদের সকলের সাথে থাকুন৷ 17 এই শুভেচ্ছা আমি পৌল নিজে হাতে লিখলাম; প্রত্যেক চিঠিতে এটাই চিহ্ন, আমি এইরকম লিখে থাকি৷ 18 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সঙ্গে থাকুক৷
1 আমি পৌল, খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত৷ আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বর ও প্রত্যাশাস্থল খ্রীষ্ট যীশুর অনুমতিক্রমে আমি এই পদে নিযুক্ত৷ 2 আমি তীমথিয়ের কাছে এই চিঠি লিখছি; তুমি আমার প্রকৃত পুত্রের মতো কারণ তুমি বিশ্বাসী৷ পিতা ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশু তোমার প্রতি অনুগ্রহ, দয়া ও শান্তি প্রদান করুন৷ 3 আমি চাই তুমি ইফিষে থাকো; মাকিদনিয়া যাবার সময় আমি তোমাকে এই অনুরোধ করেছিলাম৷ ইফিষের কিছু লোক ভ্রান্ত শিক্ষা দিচ্ছে৷ তুমি ইফিষে থেকে সেই লোকদের সাবধান করে দাও, য়েন তারা ভ্রান্ত শিক্ষা না দেয়৷ 4 তাদের বলো তারা য়েন ধর্মীয় উপকথা নিয়ে, বংশের অন্তহীন তালিকা নিয়ে সময় না কাটায়৷ ওসবে তর্কের সৃষ্টি হয়, ঈশ্বরের কাজে ওসব সাহায্য করে না৷ ঈশ্বরের কাজ বিশ্বাসের মাধ্যমে হয়৷ 5 এই আদেশের আসল উদ্দেশ্য হল সেই ভালবাসা জাগিয়ে তোলা৷ সেই ভালবাসার জন্য প্রযোজন শুচি হৃদয়, সত্ বিবেক ও অকপট বিশ্বাস৷ 6 কিছু লোক আছে যাঁরা এসব থেকে দূরে সরে গেছে আর তারা এমন সব কথা বলে যা মূল্যহীন৷ 7 তারা বিধি-ব্যবস্থার শিক্ষক হতেচায়, অথচ তারা য়ে কি বলে তার অর্থ নিজেরাই জানে না৷ এমন কি, য়ে বিষয় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জোর দিয়ে বলে তারা নিজেরাই সেই বিষয় সম্বন্ধে বোঝে না৷ 8 কিন্তু আমরা জানি য়ে, বিধি-ব্যবস্থা উত্তম, যদি কেউ তা ঠিক মতো ব্যবহার করে৷ 9 আমরা আরো জানি য়ে বিধি-ব্যবস্থা ধার্মিক লোকদের জন্য নয়; কিন্তু যাঁরা ঈশ্বর বিরোধী, বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী, পাপী, অপবিত্র, অধার্মিক, যাঁরা মা-বাবাকে হত্যা করে, যাঁরা খুন করে, 10 যাঁরা য়ৌন পাপে পাপী, সমকামী, যাঁরা দাস বিক্রির ব্যবসা করে, যাঁরা মিথ্যা বলে, যাঁরা মিথ্যা শপথ করে, দোষারোপ করে ও যাঁরা কোন না কোনভাবে ঈশ্বরের সত্য শিক্ষার বিরোধিতা করে, বিধি-ব্যবস্থা তাদের জন্য দেওয়া হয়েছে৷ 11 সেই শিক্ষা পরম ধন্য ঈশ্বরের মহিমাময় সুসমাচারের অংশ যা তিনি আমায় বলতে দিয়েছেন৷ 12 আমি আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তিনি আমাকে বিশ্বস্তমনে করে তাঁর সেবা করার কাজে নিযুক্ত করেছেন৷ 13 অতীতে আমি খ্রীষ্টের নামে নিন্দা করতাম, তাঁকে নির্য়াতন করতাম ও তাঁর প্রতি খারাপ ব্যবহার করতাম৷ কিন্তু ঈশ্বর আমার প্রতি দয়া করলেন, কারণ অবিশ্বাসী অবস্থায় আমি ঐসব কাজ করেছিলাম এবং কি করছিলাম তা জানতাম না৷ 14 কিন্তু আমাদের প্রভুর অনুগ্রহ পরিপূর্ণরূপে আমাকে দেওয়া হল৷ সেই অনুগ্রহের সঙ্গে এল খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস ও ভালবাসা৷ 15 এখন আমি যা বলছি তা সত্য, তা সম্পূর্ণভাবে তোমাদের গ্রহণ করা উচিত৷ খ্রীষ্ট যীশু পাপীদের উদ্ধার করার জন্য জগতে এসেছেন৷ তাদের মধ্যে আমিই তো সবচেয়ে বড় পাপী৷ 16 কিন্তু এই কারণেই আমার প্রতি দয়া করা হয়েছে৷ পাপীদের মধ্যে আমি অগ্রগন্য হলেও খ্রীষ্ট যীশু আমার প্রতি তাঁর পূর্ণ ধৈর্য্য দেখালেন৷ যাঁরা পরে তাঁর ওপর বিশ্বাস করবে ও অনন্ত জীবন পাবে তাদের সামনে আমাকে এক দৃষ্টান্তস্বরূপ রাখলেন৷ 17 যিনি যুগপর্য়ায়ের রাজা, অক্ষয়, অদৃশ্য ও একমাত্র ঈশ্বর; যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে তাঁরই সম্মান ও মহিমা হোক্৷ আমেন৷ 18 তীমথিয়, তুমি আমার পুত্রের মত৷ আমি তোমাকে একটি আদেশ দিচ্ছি৷ অতীতে তোমার সম্পর্কে য়ে ভাববাণী ছিল তার সঙ্গে মিল রেখে এই আদেশ দিচ্ছি৷ এসব কথা আমি তোমাকে জানাচ্ছি য়েন তুমি সেই ভাববাণী অনুসারে চলতে পার ও বিশ্বাসের উত্তম যুদ্ধে প্রাণপণ করতে পার৷ 19 তুমি বিশ্বাস ও সত্ বিবেক রক্ষা করে এই সংগ্রাম চালিয়ে যাও৷ কিছু কিছু লোক তাদের সত্ বিবেক পরিত্যাগ করেছে; আর ফলস্বরূপ তারা তাদের বিশ্বাস ধ্বংস করেছে৷ 20 তাদের মধ্যে হুমিনায় ও আলেকসান্দর রয়েছে, আমি তাদের শয়তানের হাতে তুলে দিয়েছি যাতে তারা উচিত শিক্ষা পায় এবং ঈশ্বর নিন্দা আর কখনও না করে৷
1 আমার প্রথম অনুরোধ এই য়ে তোমরা সকল মানুষের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা কর৷ সকল মানুষের জন্যই ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বল৷ তাদের যা কিছু প্রযোজন তা ঈশ্বরের কাছে চাও ও তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ হও৷ 2 বিশেষ করে রাজাদের ও আধিকারিক সকলের জন্য প্রার্থনা করা উচিত য়েন আমরা নীরবে ও শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারি, য়ে জীবন হবে ঈশ্বরভক্তি ও ঈশ্বরের উপাসনায় পূর্ণ৷ 3 এরকম করা ভাল, এতে আমাদের ত্রাণকর্তা সন্তষ্ট হন৷ 4 তাঁর ইচ্ছা এই যেন সমস্ত মানুষ উদ্ধার পায় ও সত্য জানতে পারে৷ 5 কারণ একমাত্র ঈশ্বর আছেন আর ঈশ্বরের ও মানুষের মধ্যে কেবল একমাত্র পথ আছে, যার মাধ্যমে মানুষ ঈশ্বরের কাছে পৌঁছতে পারে৷ সেই পথ যীশু খ্রীষ্ট, যিনি নিজেও একজন মানুষ ছিলেন৷ 6 সমস্ত লোকদের পাপমুক্ত করতে যীশু নিজেকে উত্সর্গ করেছিলেন৷ যীশুর এই কাজ সঠিক সময়ে প্রমাণ করল য়ে ঈশ্বর চান য়েন সব লোক উদ্ধার পায়৷ 7 এই জন্যই অইহুদীদের কাছে আমাকে সুসমাচার প্রচারক ও প্রেরিতরূপে এবং বিশ্বাসের ও সত্যের শিক্ষক হিসাবে মনোনীত করা হল৷ আমি সত্যি বলছি, মিথ্যা বলছি না৷ 8 আমার ইচ্ছা এই য়ে, সমস্ত জায়গায় পুরুষেরা প্রার্থনা করুক৷ যাঁরা প্রার্থনার জন্য ঈশ্বরের দিকে হাত তুলবে তাদের পবিত্র হওয়া চাই৷ তারা মনে ক্রোধ না রেখে ও তর্কাতর্কি না করে প্রার্থনা করুক৷ 9 অনুরূপভাবে আমি চাই নারীরা য়েন ভদ্রভাবে ও যুক্তিযুক্তভাবে উপযুক্ত পোশাক পরে তাদের সজ্জিত করে৷ তারা নিজেদের য়েন শৌখিন খোঁপা করা চুলে বা সোনা মুক্তোর গহনায় বা দামী পোশাকে না সাজায়৷ 10 কিন্তু সত্ কাজের অলঙ্কারে তাদের সেজে থাকা উচিত৷ য়ে নারী নিজেকে ঈশ্বরভক্ত বলে পরিচয় দেয়, তার এইভাবেই সাজা উচিত৷ 11 নারীরা সম্পূর্ণ বশ্যতাপূর্বক নীরবে নতনম্র হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করুক৷ 12 আমি কোন নারীকে শিক্ষা দিতে অথবা কোন পুরুষের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করতে দিই না; বরং নারী নীরব থাকুক৷ 13 কারণ প্রথমে আদমকে এবং পরে হবাকে সৃষ্টি করা হয়েছিল৷ 14 আদমকে দিয়াবল বোকা বানাতে পারে নি; কিন্তু নারীকেই দিয়াবল সম্পূর্ণভাবে বোকা বানিয়ে পাপে ফেলেছিল৷ 15 তবু যদি আত্মসংযমের সাথে বিশ্বাসে, প্রেমে ও পবিত্রতায় তারা জীবনযাপন করতে থাকে, তবে নারী মাতৃত্বের দাযিত্ব পালন করে উদ্ধার পাবে৷
1 একথা সত্য: যদি কেউ মণ্ডলীর তত্ত্বাবধায়কের কাজে আগ্রহী হন, তবে তিনি এক উত্তম কাজ আশা করেন৷ 2 তত্ত্বাবধায়ককে অতি অবশ্যই সমালোচনার উর্দ্ধে থাকতে হবে৷ তিনি এক স্ত্রীর স্বামী হবেন৷ তাঁকে হতে হবে আত্মসংযমী, ভদ্র, সম্মানীয়, অতিথিসেবক এবং শিক্ষাদানে পারদর্শী মানুষ৷ 3 প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করা তাঁর উচিত হবে না৷ তিনি উগ্রপ্রকৃতির মানুষও হবেন না৷ তিনি হবেন ভদ্র ও শান্তিপ্রিয়৷ স্বর্গের প্রতি তাঁর লোভ থাকবে না৷ 4 তাঁকে এমনই মানুষ হতে হবে যিনি নিজের ঘর সংসার সুষ্ঠভাবে চালাতে পারেন, নিজের ছেলেমেয়েদের সুশাসনে রাখতে পারেন যাতে তিনি তাদের ভক্তি শ্রদ্ধা পান৷ 5 কেউ যদি নিজের সংসার চালনা করতে না জানে, তবে সে কেমন করে ঈশ্বরের মণ্ডলীর তত্ত্বাবধান করবে? 6 কোন নবদীক্ষিত শিষ্য য়েন মণ্ডলীর তত্ত্বাবধায়ক না হয়৷ এতো শিগ্গির তাকে এই কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে ভেবে সে হয়তো অহঙ্কারী হয়ে উঠবে৷ তখন দিয়াবলের মতো তার পর্বের জন্য তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে; 7 আর বাইরের লোকদের কাছেও তার সুনাম থাকা দরকার, যাতে সে কোনভাবে অপদস্থ না হয় এবং শয়তানের ফাঁদে না পড়ে৷ 8 সেইরকম পরিচারকদের সকলের শ্রদ্ধা পাবার য়োগ্য মানুষ হতে হবে৷ তারা য়েন এক কথার মানুষ হয়, মাত্রা ছাড়িয়ে দ্রাক্ষারস পান না করে, অপরকে ঠকিয়ে ধনী হবার চেষ্টা না করে৷ 9 তারা য়েন নির্মল বিবেক হয় এবং খ্রীষ্টীয় ধর্ম বিশ্বাসের প্রকাশিত গভীর সত্যগুলি নিয়ে আঁকড়ে থাকে৷ 10 প্রথমে তাদের যাচাই করা হোক৷ যদি তাদের মধ্যে নিন্দনীয় কিছু না থাকে, তাহলেই তারা পরিচারকরূপে সেবা করতে পারবে৷ 11 সেইভাবে মণ্ডলীতে মহিলাদেরও সকলের শ্রদ্ধেয়া হতে হবে৷ তাঁরা য়েন অপরের নামে কুত্সা না রটায়, য়েন মিতাচারী ও সব ব্যাপারে নির্ভরয়োগ্য হন৷ 12 মণ্ডলীর পরিচারকদের য়েন একটি মাত্র স্ত্রী থাকে, তারা য়েন ভালভাবে তাদের সন্তানদের পালন করতে ও সংসার পরিচালনা করতে পারে৷ 13 কারণ য়ে পরিচারকরা ভালভাবে কাজ করে, তারা সুনাম অর্জন করে এবং খ্রীষ্ট যীশুতে তাদের বিশ্বাসে সাহসী হয়ে ওঠে৷ 14 যদিও আমি আশা করছি শিগ্গির তোমার কাছে যাব তবু তোমাকে এসব লিখলাম৷ 15 কারণ যদি আমার দেরী হয়, তাহলে য়েন তুমি জানতে পার য়ে ঈশ্বরের পরিবারের মধ্যে কেমন আচার আচরণ করতে হয়, যা জীবন্ত ঈশ্বরের মণ্ডলী - এই মণ্ডলী হল সত্যের স্তন্ভ ও দৃঢ় ভিত৷ 16 একথা কেউই অস্বীকার করতে পারে না য়ে আমাদের ধর্মের নিগূঢ় সত্য অতি মহান:খ্রীষ্ট মনুষ্য দেহে প্রকাশিত হলেন, পবিত্র আত্মার শক্তিতে যথার্থ প্রতিপন্ন হলেন, স্বর্গদূতরা তাঁর দর্শন পেলেন৷ সর্বজাতির মধ্যে তাঁর সুসমাচার প্রচারিত হল, জগতের মানুষ তাঁর প্রতি বিশ্বাসী হয়ে উঠল, পরে স্বমহিমায় তিনি স্বর্গে উন্নীত হলেন৷
1 পবিত্র আত্মা স্পষ্টই বলছেন, শেষের দিকে কিছু লোক বিশ্বাস থেকে সরে পড়বে৷ য়ে মন্দ আত্মা মিথ্যা বলে, তারা সেই মন্দ আত্মাকে আনুগত্য দেখাবে এবং ভূতদের শিক্ষায় মন দেবে৷ 2 যাঁরা মিথ্যা বলে ও লোকদের প্রতারণা করে, এসব ভ্রান্ত শিক্ষা তাদের কাছ থেকেই আসে৷ তারা ভাল ও মন্দের মধ্যে বিচার করতে পারে না৷ 3 এরাই মানুষকে বিবাহ করতে নিষেধ করে ও কোন কোন খাদ্য় খেতে নিষেধ করে৷ কিন্তু সেই খাদ্য় সামগ্রী ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন এবং যাঁরা বিশ্বাসী ও যাঁরা সত্যকে জানে তারা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে এই খাবার খেতে পারে৷ 4 বাস্তবিক ঈশ্বরের সৃষ্ট সমস্ত বস্তুই ভাল, ধন্যবাদের সঙ্গে গ্রহণ করলে কিছুই অগ্রাহ্য় নয়৷ 5 কারণ ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে ও প্রার্থনা দ্বারা তা শুচিশুদ্ধ হয়৷ 6 এইসব কথা ওখানকার ভাই ও বোনেদের মনে করিয়ে দিলে তুমি খ্রীষ্ট যীশুর উত্তম সেবকরূপে গন্য হবে৷ বিশ্বাসের বাক্য ও উত্তম শিক্ষা অনুসরণ করে তুমি য়ে শক্তিশালী হয়েছ তার প্রমাণ দেখাতে পারবে৷ 7 ঈশ্বরবিহীন অর্থহীন গল্পের সাথে তোমাদের কোন সম্পর্ক রেখো না৷ ঈশ্বরের এক ভক্তিমান সেবক হয়ে নিজেকে শিক্ষিত কর৷ 8 শরীর চর্চায় কিছু উপকার হয় বটে; কিন্তু ঈশ্বরের সেবা সব দিক দিয়েই কল্য়াণ করে, কারণ তা বর্তমান ও ভবিষ্যত্ জীবনে লাভের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে৷ 9 যা আমি বলি তা সত্য ও সম্পূর্ণ গ্রহণয়োগ্য৷ 10 এই জন্য আমরা প্রাণপন পরিশ্রম ও সংগ্রাম করছি, কারণ আমরা সেই জীবন্ত ঈশ্বরের ওপর প্রত্যাশা রেখেছি, যিনি সমস্ত মানুষের ত্রাণকর্তা, বিশেষ করে তাদের যাঁরা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখে৷ 11 তুমি এই সব বিষয় পালনের জন্য আদেশ কর ও শিক্ষা দাও৷ 12 তুমি যুবক বলে কেউ য়েন তোমায় তুচ্ছ না করে৷ কিন্তু তোমার কথা, স্বভাব, ভালোবাসা, বিশ্বাস ও পবিত্রতার দ্বারা বিশ্বাসীদের সামনে দৃষ্টান্ত রাখ৷ 13 লোকদের কাছে শাস্ত্র পাঠ করে যাও, তাদের শক্তিশালী কর ও শিক্ষা দাও৷ আমি যতদিন না আসি তুমি এইসব কাজ করবে৷ 14 তোমার মধ্যে য়ে আত্মিক বরদান রয়েছে তা ব্যবহার করতে ভুলো না৷ এক সময় মণ্ডলীর প্রাচীনরা তোমার ওপর হস্তার্পণ করেছিলেন, সেই সময় ভাববাদীর দ্বারা সেই দান তোমাতে অর্পিত হয়েছিল৷ 15 ঐসব কাজ করে যাও৷ ঐ কাজের উদ্দেশ্যে তোমার জীবন উত্সর্গ কর৷ তাতে সব লোক দেখতে পাবে তোমার কাজ কেমন এগোচ্ছে৷ 16 নিজের জীবন ও তুমি যা শিক্ষা দাও সে সম্বন্ধে সাবধান থেকো৷ তোমার ঐ সব দাযিত্ব তুমি পালন করেই চল; কারণ তা করলে তুমি নিজেকে ও যাঁরা তোমার কথা শোনে, তাদেরও উদ্ধার করতে পারবে৷
1 তোমার চেয়ে বযোবৃদ্ধ কাউকে কখনও কঠোরভাবে তিরস্কার করবে না; তাকে পিতার মত মনে করে তার কাছে আবেদন কর৷ তোমার চেয়ে যাঁরা কমবয়সী তাদের সাথে তোমার ভাইয়ের মত ব্যবহার করো৷ 2 বয়স্কা মহিলাদের মায়ের মতো দেখো৷ যুবতীদের সঙ্গে পূর্ণ বিশুদ্ধতার সাথে বোনের মত ব্যবহার করো৷ 3 প্রকৃত বিধবারা যাঁরা সত্যি একাকী ও বঞ্চিত তাদের সম্মান করো; 4 কিন্তু কোন বিধবার যদি ছেলেমেয়ে ও নাতি-নাতনী থাকে তাহলে তারা আগে ঘরের মানুষেরই প্রতি তাদের দাযিত্ব পালন করতে শিখুক৷ তা করলে তারা তাদের পিতামাতা ও পিতামহ, মাতামহের স্নেহের ঋণ শোধ করতে পারবে৷ এই কাজ ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে৷ 5 প্রকৃত বিধবা য়ে পৃথিবীতে সহায় সম্বলহীনা সে তো ঈশ্বরের ওপর ভরসা রেখে চলে৷ সে তো দিনরাত ঈশ্বরের কাছে সাহায্য লাভের জন্য প্রার্থনা জানায়৷ 6 য়ে বিধবা বিলাস ব্যসনেই দিন কাটায় তার কথা আলাদা, বলতে গেলে সে জীবিত থেকেও মৃত৷ 7 এইসব নির্দেশ তুমি বিশ্বাসীদের মনে করিয়ে দাও, যাতে কারো কোন বদনাম না হয়৷ 8 কোন লোক যদি তার আত্মীয় স্বজন আর বিশেষ করে তার পরিবারের লোকদের ভরণপোষন না করে, তার মানে সে বিশ্বাসীদের পথ থেকে সরে গেছে, সে তো অবিশ্বাসীর চেয়েও অধম৷ 9 বিধবাদের তালিকায় এমন বিধবাদের নাম লেখা চলে যার বয়স কমপক্ষে ষাট বছর এবং যার একটিমাত্র স্বামী ছিল৷ 10 যার নানা সত্ কাজের জন্য সুনাম আছে অর্থাত্ যদি সে ছেলেমেয়েদের মানুষ করে থাকে, যদি বিদেশীদের সেবা করে থাকে, যদি ঈশ্বরের লোকদের পা ধুইয়ে থাকে, যদি কষ্টে লোকদের সাহায্য করে থাকে, যদি সমস্ত সত্ কাজের অনুসরণ করে থাকে৷ 11 কোন তরুণী বিধবার নাম তুমি কিন্তু সেই তালিকায় তুলতে অস্বীকার করো৷ কারণ তাদের দৈহিক বাসনা খ্রীষ্ট ভক্তির চেয়ে প্রবল হয়ে উঠলে তারা আবার বিয়ে করতে চাইবে৷ 12 তা করলে তাদের প্রথম শপথ ভঙ্গের দায়ে তারা নিজেদের ওপর শাস্তি ডেকে আনে৷ 13 এ ছাড়া তারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়িয়ে অলস হতে শেখে, কেবল অলসও নয়, বরং বাচাল এবং অনধিকার চর্চা করতে ও য়ে কথা বলা উচিত নয় সেই কথা বলতে শেখে৷ 14 অতএব আমার ইচ্ছা তারা আমাদের শত্রুদের নিন্দা করবার কোন সুয়োগ না দিয়ে বরং যুবতী বিধবা আবার বিয়ে করুক, সন্তানের মা হোক, ঘর সংসার করুক৷ 15 কারণ কয়েকজন বিধবা তো ইতিমধ্যেই ধর্মের পথ ছেড়ে শয়তানের পথে চলেছে৷ 16 যদি কোন বিশ্বাসী মহিলার পরিবারে বিধবারা থাকে, তবে মণ্ডলীকে বোঝাগ্রস্ত না করে তিনিই তাদের উপকার করুন, তাদের সাহায্য করুন, তার ফলে মণ্ডলী সেই সব বিধবাদের সাহায্য করতে পারবে যাঁরা সত্যি নিরুপায়৷ 17 য়ে সমস্ত প্রাচীনেরা মণ্ডলী পরিচালনা করেন তাঁরা দ্বিগুণ সম্মানের য়োগ্য, বিশেষ করে যাঁরা বাক্য প্রচার ও শিক্ষাদান করেন৷ 18 কারণ শাস্ত্র বলছে, ‘য়ে বলদ শস্য মাড়ে তার মুখ বন্ধ করো না৷’‘আর য়ে কাজ করে সে তো তার পারিশ্রমিক লাভের য়োগ্য৷’ 19 কোন প্রাচীনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ গ্রাহ্য় করো না, যদি না দুই বা তিনজন সাক্ষী সেই অভিযোগ সমর্থন করে৷ 20 য়ে প্রাচীনরা পাপ করেই চলে তাদের মণ্ডলীতে সকলের সামনে তিরস্কার কর, যাতে অন্যরা চেতনা লাভ করে৷ 21 আমি ঈশ্বরের, খ্রীষ্ট যীশুর মনোনীত স্বর্গদূতদের সামনে তোমাকে এই কাজ করতে দৃঢ় আদেশ দিচ্ছি, কিন্তু সত্য না জেনে তুমি কারো বিচার করো না এবং এটা সকলের ক্ষেত্রে সমানভাবে কর৷ 22 মণ্ডলীর সেবার জন্য কাউকে নিযুক্ত করতে ও তার ওপর হস্তার্পন করতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিও না৷ অপরের পাপের ভাগী হযো না৷ নিজেকে শুদ্ধভাবে রক্ষা কর৷ 23 তীমথিয় শুধু জল খেও না, তার বদলে তুমি একটু দ্রাক্ষারস পান করো, কারণ তা তোমার পেটের জন্যে ভাল হবে ও তোমার বার বার অসুখ হবে না৷ 24 কোন কোন লোকের পাপ সহজেই দেখা যায়, আর তাদের পাপ এই প্রমাণ করে য়ে তাদের বিচার হবে, আবার কোন কোন লোকের পাপ পরে স্পষ্টভাবে দেখা যায়৷ 25 অনুরূপভাবে মানুষের সত্ কাজও সহজে প্রকাশ পায়৷ এমনকি তাদের স্পষ্টভাবে দেখা না গেলেও তাদের চিরদিন ঢেকে রাখা যায় না৷
1 যাঁরা দাস, তারা নিজের নিজের মনিবদের যথায়োগ্য সম্মান করুক৷ তা করলে ঈশ্বরের দান এবং আমাদের শিক্ষার নিন্দা হবে না৷ 2 য়ে সব দাসের মনিব বিশ্বাসী, তারা পরস্পর ভাই৷ তাই বলে দাসেরা সম্মানের দিক দিয়ে মনিব ভাইদের কোনভাবে তুচ্ছ না করুক, এবং সেইসব দাসেরা তাদের মনিবদের আরো ভাল করে সেবা করুক, কারণ যাঁরা উপকার পাচ্ছে তারাও বিশ্বাসী৷তুমি লোকদের এইসব অবশ্য শেখাবে ও সেই অনুসারে কাজ করতে উত্সাহ দেবে৷ 3 কিছু লোক আছে যাঁরা অন্যরকম শিক্ষা দেয়; তারা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সত্য শিক্ষার সঙ্গে একমত নয়, এবং য়ে শিক্ষা প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের সেবার জন্য পথ দেখায় তা তারা গ্রহণ করে না৷ 4 য়ে ব্যক্তির শিক্ষা ভ্রান্ত, সে গর্বে পরিপূর্ণ ও অজ্ঞ৷ সে নিছক কথা নিয়ে রাগ ও তর্কাতর্কি করতে ভালবাসে৷ এটাই তার অসুস্থতা, যার ফলশ্রুতি হল ঈর্ষা, ঝগড়া, পরনিন্দা ও কুসন্দেহ৷ 5 এইসব লোকদের কাছ থেকে শুধু ঝগড়া শোনা যায়, এরা দুর্নীতিগ্রস্ত মনের মানুষ এবং সত্যকে হারিয়েছে৷ তারা মনে করে য়ে ঈশ্বরের সেবা করা ধনী হবার এক উপায়৷ 6 একথা সত্যি য়ে ঈশ্বরের সেবার ফলে মানুষ মহাধনী হতে পারে, যদি তার কাছে যা আছে তাতেই সে সন্তষ্ট থাকে৷ 7 কারণ আমরা জগতে কিছুই সঙ্গে করে নিয়ে আসি নি; আর কোন কিছুই সঙ্গে করে নিয়ে য়েতেও পারি না৷ 8 তাই অন্ন বস্ত্রের সংস্থান পেলে আমরা তাতেই সন্তষ্ট থাকব৷ 9 কিন্তুযাদের ধনী হবার ইচ্ছা, তারা প্রলোভনে এবং ফাঁদে পড়ে নানারকম মূর্খামির কাজে ও ক্ষতিকর বাসনায় পড়ে যা তাদের ধ্বংস ও বিনাশের পথে ঠেলে দেয়৷ 10 কারণ সকল মন্দের মূলে আছে অর্থের প্রতি আসক্তি৷ সেই অর্থের লালসায় কত লোক বিশ্বাস থেকে দূরে সরে গেছে; আর তার ফলে তারা নিজেদের জীবনে অনেক অনেক দুঃখ ব্যথা ডেকে এনেছে৷ 11 কিন্তু তুমি ঈশ্বরের লোক, তাই এই সব থেকে তুমি দূরে থেকো৷ সত্য পথে চলতে চেষ্টা কর, ঈশ্বরের সেবা কর, বিশ্বাস, ভালবাসা, ধৈর্য্য ও নম্রতা এইসবের জন্য চেষ্টা কর৷ 12 বিশ্বাস রক্ষা করার দৌড়ে জয়লাভ করতে প্রাণপন চেষ্টা কর৷ য়ে জীবন চিরায়ত তা পাবার বিষয়ে সুনিশ্চিত হও৷ তুমি সেই জীবন গ্রহণ করার জন্য আহুত৷ 13 অনেক সাক্ষীর সামনে এবং সেই যীশু খ্রীষ্টের সামনে আমি তোমাকে এই আদেশ করছি, পন্তীয় পীলাতের সামনে যীশুও সেই মহান সত্যের পক্ষে নির্ভীক স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন৷ 14 যা তোমাকে আদেশ করা হয়েছে, তা পালন কর, য়েন এখন থেকে প্রভু যীশু পুনরায় না আসা পর্যন্ত অনিন্দনীয় আচরণে তোমার দাযিত্ব পালন করে চল৷ 15 নিরুপিত সময়ে ঈশ্বর এসমস্ত সম্পন্ন করবেন; তিনি সেই পরম ধন্য ঈশ্বর, বিশ্বের একমাত্র শাসনকর্তা যিনি রাজার রাজা ও প্রভুর প্রভু৷ 16 যিনি অমরতার একমাত্র অধিকারী এবং অগম্য জ্যোতির মধ্যে বাস করেন, য়াঁকে কেউ কোন দিন দেখতে পায় নি, পাবেও না৷ সম্মান ও অনন্ত পরাক্রম ও কর্তৃত্ত্ব যুগে যুগে তাঁরই হোক্৷ আমেন৷ 17 যাঁরা এই যুগে ধনী, তাদের এই আদেশ দাও, য়েন তারা গর্ব না করে৷ সেই ধনীদের বলো তারা য়েন অনিশ্চিত সম্পদের ওপর আস্থা না রাখে৷ কিন্তু ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করুক, যিনি আমাদের উদার হাতে সব কিছু ভোগ করতে দিয়েছেন৷ ধনীদের বল তারা য়েন সত্ কর্ম করে৷ 18 তারা য়েন সত্ কাজ রূপ ধনে ধনী হয়ে ওঠে, তাদের উদার হতে ও সম্পদ ভাগ করে নিতে প্রস্তুত হতেবল৷ 19 এইকাজের দ্বারা তারা স্বর্গে সম্পদ গড়ে তুলবে; সম্পদের ভিতে গড়ে উঠবে তাদের ভবিষ্যত, তখন তারা প্রকৃত জীবনের অধিকারী হতে পারবে৷ 20 শোন তীমথিয়, তোমার ওপর ঈশ্বর য়ে ভার দিয়েছেন তা সযত্নে রক্ষা কর৷ যা তথাকথিত পাণ্ডিত্য নামে পরিচিত, সেই মূর্খ অসার কথা- বার্তার ও তর্কের মধ্যে য়েও না৷ 21 কেউ কেউ জীবনে ঐ জ্ঞানের দাবি করে৷ ঐসব লোক বিশ্বাস থেকে দূরে সরে গেছে৷ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের ওপর থাকুক৷
1 আমি পৌল, খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত৷ আমি একজন প্রেরিত কারণ ঈশ্বর তাই চেয়েছিলেন৷ লোকদের কাছে ঈশ্বর আমাকে পাঠালেন যাতে খ্রীষ্ট যীশুতে জীবন লাভের য়ে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, সেই কথা আমি তাদের বলি৷ 2 তীমথিয়ের কাছে লিখছি৷ তুমি আমার প্রিয় পুত্রের মত৷ পিতা ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুর কাছ থেকে তোমাদের ওপর অনুগ্রহ, দযা ও শান্তি বর্তুক৷ 3 দিনে বা রাতে প্রার্থনার সময় আমি তোমাকে স্মরণ করে থাকি৷ প্রার্থনার সময় তোমার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই৷ আমার পিতৃপুরুষরা য়াঁর সেবা করতেন তিনি সেই ঈশ্বর৷ শুদ্ধ বিবেকে আমি সর্বদাই তাঁর সেবা করে আসছি৷ 4 তুমি য়ে আমার জন্যে চোখের জল ফেলেছিলে সে কথা আমার মনে আছে৷ আমি তোমাকে দেখতে খুবই আকাঙ্খা করছি যাতে আমার অন্তরটা আনন্দে ভরে ওঠে৷ 5 তোমার আন্তরিক বিশ্বাসের কথাও আমার মনে আছে৷ ঐ ধর্ম বিশ্বাস প্রথমে ছিল তোমার দিদিমা লোযীর ও তোমার মা উনীকীর৷ আমি জানি য়ে সেই একই বিশ্বাস তোমার অন্তরে অটুট রয়েছে৷ 6 সেই জন্য আমি তোমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি য়ে, তোমার মধ্যে ঈশ্বরের দেওয়া বিশেষ দান রয়েছে৷ আমি যখন তোমার ওপর হস্তার্পন করেছিলাম তখন সেই দান ঈশ্বর তোমাকে দিয়েছিলেন৷ এখন আমি চাই য়ে সেই দান তুমি কাজে লাগাও এবং তাকে দিন দিন আরো বাড়তে দাও; য়েমন করে সামান্য অগ্নি শিখা এক প্রলয় অগ্নি সৃষ্টি করে৷ 7 ঈশ্বর আমাদের ভীরুতার আত্মা দেন নি৷ ঈশ্বর আমাদের পরাক্রম, প্রেম ও আত্মসংযমের আত্মা দিয়েছেন৷ 8 তাই আমাদের প্রভু যীশুর কথা লোকদের কাছে বলতে লজ্জা পেও না৷ আমার বিষয়েও লজ্জা বোধ করো না৷ আমি তো প্রভুর জন্য কারাগারে আছি৷ কিন্তু সুসমাচারের জন্য তুমি আমার সঙ্গে দুঃখভোগ কর৷ ঐ কাজ করার জন্য শক্তি ঈশ্বরই আমাদের দেন৷ 9 ঈশ্বর আমাদের পরিত্রাণ করেছেন এবং তাঁর পবিত্র প্রজা করেছেন, আমাদের কাজের কারণে নয়, কিন্তু তাঁর নিজ অনুগ্রহ এবং সংকল্প অনুসারে করেছেন৷ সৃষ্টির বহু পূর্বে ঈশ্বর, খ্রীষ্ট যীশুতে সেই অনুগ্রহ আমাদের দেন; 10 কিন্তু সেই অনুগ্রহ আমাদের ত্রাণকর্তা খ্রীষ্ট যীশু না আসা পর্যন্ত প্রকাশিত হয় নি৷ যীশু এসে সেই মৃত্যুকে শক্তিহীন করলেন ও তাঁর সুসমাচারের মাধ্যমে জীবনের ও অমরতার পথ দেখালেন৷ 11 সেই সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমাকে মনোনীত করা হল; আমাকে প্রেরিতরূপে ও সেই সুসমাচারের শিক্ষকরূপে মনোনীত করা হল৷ 12 সেই সুসমাচার প্রচার করি বলে আমি কষ্টভোগ করছি; কিন্তু তাতে আমি লজ্জা বোধ করি না৷ য়াঁকে আমি বিশ্বাস করেছি তাঁকে আমি জানি৷ তিনি যা কিছুর ভার আমার ওপর তুলে দিয়েছেন, তা য়ে তিনি সেই মহাদিনটি পর্যন্ত রক্ষা করতে পারেন এই বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই৷ 13 তুমি য়ে সত্য শিক্ষা আমার কাছে পেয়েছ সেই অনুসারে চল৷ খ্রীষ্ট যীশুতে য়ে ভালবাসা ও বিশ্বাস তুমি পেয়েছ তা দৃঢ়ভাবে ধরে থাক৷ ঐসব শিক্ষা তোমার সামনে দৃষ্টান্ত স্বরূপ হয়ে থাকবে, সে অনুসারে তোমাকে শিক্ষা দিতে হবে৷ 14 য়ে মূল্যবান সত্য তোমার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তা তুমি আমাদের অন্তরে বাসকারী পবিত্র আত্মার সাহায্যে রক্ষা কর৷ 15 তুমি তো জান, এশিয়াতে যাঁরা আছে, তারা সকলে আমায় ছেড়েচলে গেছে, তাদের মধ্যে ফুগিল্ল ও র্হম্মগিনিও আছে৷ 16 প্রভু অনীষিফরের পরিবারকে দয়া করুন, কারণ অনীষিফর বহুবার আমায় সুস্থির হতে সাহায্য করেছিলেন৷ আমি কারাগারে রয়েছি বলে তিনি কোনদিনই লজ্জাবোধ করেন নি, 17 বরং তিনি রোমে এসে আমাকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন৷ 18 প্রভু তাঁকে এই বর দিন য়েন সেই দিন তিনি প্রভুর কাছে দয়া পান; আর ইফিষে তিনি কিভাবে আমায় সাহায্য করেছিলেন, তা তুমি ভাল করেই জান৷
1 তীমথিয় তুমি আমার সন্তানের মতো, খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের য়ে অনুগ্রহ আছে তার দ্বারা তুমি শক্তিমান হয়ে ওঠ৷ 2 তুমি ও অন্যান্য অনেকে আমি য়ে বিষয় শিক্ষা দিয়েছি তা শুনেছ; সেইসব এমন বিশ্বস্ত লোকদের শেখাও যাঁরা অন্য লোকদের শিক্ষা দিতে সক্ষম হবে৷ 3 খ্রীষ্ট যীশুর বিশ্বস্ত সৈনিকের মত আমাদের সাথে কষ্টভোগ কর৷ 4 সৈনিক, যুদ্ধ করার সময় তার সেনাপতিকে সন্তুষ্ট করবার কথা মনে রাখে, জনসাধারণের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে না৷ 5 আবার কোন ব্যক্তি যদি ক্রীড়া প্রতিয়োগিতায় অংশ গ্রহণ করে, তবে তাকে প্রতিয়োগিতার সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হয় য়েন সে বিজযী হতে পারে৷ 6 য়ে কৃষক কঠোর পরিশ্রম করে, সেই প্রথমে ফসলের ভাগ পায়৷ 7 আমি যা বলি, তা ভেবে দেখ, কারণ এসব বিষয় বুঝতে প্রভু তোমাকে বুদ্ধি দেবেন৷ 8 যীশু খ্রীষ্টের কথা মনে কর, তিনি দাযূদের বংশে জন্মেছিলেন, যীশু মৃত্যুর পর মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন৷ এই তোসেই সুসমাচার যা লোকদের কাছে আমি প্রচার করি৷ 9 সুসমাচার প্রচার করেছি বলে আমি কষ্টভোগ করছি, একজন অপরাধীর মত আমাকে শেকলে বেঁধে বন্দী করে রাখা হয়েছে৷ কিন্তু ঈশ্বরের বার্তাকে শেকল দিয়ে বাঁধা যায় না৷ 10 তাই ধৈর্য্যের সঙ্গে ঈশ্বর যাদের মনোনীত করেছেন তাদের জন্য আমি সব কিছু সহ্য করি, যাতে তারাও খ্রীষ্ট যীশুতে অনন্ত মহিমার সাথে য়ে পরিত্রাণ ও অনন্ত জীবন আছে তা লাভ করে৷ 11 এই কথা বিশ্বাসয়োগ্য:কারণ আমরা যদি তাঁর সঙ্গে মৃত্যুবরণ করে থাকি, তবে তাঁর সঙ্গে জীবিতও থাকব৷ 12 এখন যদি কষ্ট সহ্য করি তবে তাঁর সাথে রাজত্বও করব৷ যদি তাঁকে অস্বীকার করি, তিনিও আমাদের অস্বীকার করবেন৷ 13 আমরা যদি অবিশ্বস্ত হই, তিনি কিন্তু বিশ্বস্ত থাকেন; কারণ তিনি নিজেকে অস্বীকার করতে পারেন না৷ 14 তুমি লোকদের এইসব কথা মনে করিয়ে দিও, ঈশ্বরের সামনে তাদের সতর্ক করে দাও য়েন লোকেরা বাক্য নিয়ে তর্ক বিতর্ক না করে, কারণ তাতে কোন লাভ হয় না, বরং যাঁরা শোনে তাদের সর্বনাশ হয়৷ 15 য়ে কর্মী সঠিকভাবে সত্য শিক্ষাকে ব্যবহার করে এবং নিজের কাজকর্ম সম্বন্ধে লজ্জিত নয় এমন একজন কর্মী হিসেবে ঈশ্বরের অনুমোদন পাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর৷ 16 কিন্তু বাজে জাগতিক আলোচনা, যার মধ্যে ঈশ্বরের কোন প্রেরণা নেই তার থেকে দূরে থাকো৷ ঐ ধরণের কথাবার্তা মানুষকে ক্রমে ক্রমে ঈশ্বর থেকে দূরে নিয়ে যায়৷ 17 যাঁরা এই ধরণের আলোচনা করে তাদের শিক্ষা কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ে৷ হুমিনায় ও কিলীত হল এই ধরণের লোক৷ 18 এরা সত্য শিক্ষা থেকে সরে গেছে৷ তারা বলছে, মৃতদের পুনরুত্থান হয়ে গেছে৷ এই দুজন লোক কিছু কিছু লোকের বিশ্বাস নষ্ট করেছে৷ 19 ঈশ্বর তাঁর মণ্ডলীর জন্য য়ে শক্ত ভিত স্থাপন করেছেন তা হেলানো যাবে না, সেই ভিতের ওপর এও লেখা আছে, ‘ঈশ্বর তাঁর মণ্ডলীর জন্য য়ে শক্ত ভিত স্থাপন করেছেন তা হেলানো যাবে না, সেই ভিতের ওপর এও লেখা আছে, ‘ঈশ্বর সেই সব লোকদের জানেন যাঁরা তাঁর’ এবং ‘য়ে কেউ নিজেকে ঈশ্বরের লোক বলে সে মন্দ কাজ হতে অবশ্যই দূরে থাকুক৷’ 20 কিন্তু কোন বড় বাড়িতে কেবল সোনার ও রূপোর বাসন নয়, কাঠের ও মাটির পাত্রও থাকে, তাদের মধ্যে কিছু বাসন থাকে বিশেষ ব্যবহারের জন্য, আবার কিছু বাসন থাকে সাধারণ ব্যবহারের জন্য৷ 21 সুতরাং যদি কেউ নিজেকে এইসব মন্দ বিষয় হতে পরিষ্কার করে তবে সে বিশেষ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত বাসনই হয়ে উঠবে, সেই ব্যক্তি পবিত্র হয়ে উঠবে আর তার কর্তা তাকে ব্যবহার করতে পারবে৷ সেই ব্যক্তি য়ে কোন সত্ কাজ করবার জন্য প্রস্তুত থাকবে৷ 22 তুমি য়ৌবনের সমস্ত কামনা বাসনা থেকে পালাও এবং যাদের অন্তঃকরণ বিশুদ্ধ, যাঁরা তাদের প্রভুতে ভরসা রাখে, সেই সমস্ত লোকের সাথে বিশ্বাস, ভালবাসা ও শান্তির সাথে সঠিক জীবনযাপনের জন্য আগ্রহী হও৷ 23 কিন্তু মূর্খতাপূর্ণ ও জ্ঞানহীন তর্কের মধ্যে জড়িয়ে পড়ো না, তুমি জান য়ে ঐসব শূন্যগর্ভ তর্কবিতর্ক থেকে লড়াইয়ের সৃষ্টি হয়৷ 24 য়ে মানুষ প্রভুর সেবক তার কোন বিবাদে জড়িয়ে পড়া ঠিক নয়, সে হবে সকলের প্রতি দয়ালু৷ প্রভুর সেবককে একজন উত্তম শিক্ষক হতে হবে, তাকে সহিষ্ণু হতে হবে৷ 25 যাঁরা তার বিরুদ্ধে কথা বলে বিনীতভাবেই তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে হবে৷ হয়তো ঈশ্বর তাদের হৃদয়ের পরিবর্তন করবেন যাতে তারা সত্যকে গ্রহণ করতে পারে৷ 26 দিয়াবল ঐ লোকদের ফাঁদে ফেলেছে ও তার ইচ্ছা পালন করার জন্য দাসে পরিণত করেছে৷ কিন্তু এমন হতে পারে য়ে তারা চেতনা পেয়ে জেগে উঠতে ও বুঝতে পারবে য়ে শয়তান তাদের নিয়ে খেলছে আর দিয়াবলের ফাঁদ থেকে তারা নিজেদের মুক্ত করতে পারবে৷
1 একথা মনে রেখো য়ে শেষকালে ভয়ঙ্কর সময় আসছে৷ 2 কারণ লোকে তখন স্বার্থপর, ও অর্থপ্রেমী হয়ে উঠবে৷ তারা গর্ব করবে, সবাইকে তুচ্ছ করবে ও পরনিন্দা করবে৷ লোকে তাদের মা-বাবার অবাধ্য হবে৷ তারা অকৃতজ্ঞ, অধার্মিক হবে; 3 অপর লোকদের জন্য তাদের স্নেহভালবাসা থাকবে না৷ তারা অপরকে ক্ষমা করতে চাইবে না বরং তারা অন্য়ের বিষয়ে নানা মন্দ কথা বলে বেড়াবে৷ লোকেরা আত্মসংযমী হবে না, হবে হিংস্র৷ তারা ভাল কিছু সইতে পারবে না৷ 4 শেষের দিনগুলিতে লোকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করবে৷ বিবেচনা না করেই তারা হঠকারীর মতো কিছু করে বসবে৷ তারা আত্মগর্বে স্ফীত হবে৷ ঈশ্বরের চেয়ে বরং তারা ভোগবিলাসকেই ভালবাসবে৷ 5 তারা ধর্মের ঠাট বজায় রাখবে, কিন্তু ঈশ্বরের শক্তি প্রত্যাখ্যান করবে৷ তীমথিয়, এমন লোকদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চল৷ 6 এদের মধ্যে এমন লোক আছে, যাঁরা চালাকি করে লোকের বাড়ি বাড়ি যায় এবং সেখানে তারা এমনসব নির্বোধ স্ত্রীলোকদের উপর প্রভুত্ব করে যাঁরা পাপের দোষে পূর্ণ এবং সব রকমের ইচ্ছা দ্বারা চালিত৷ 7 সেই স্ত্রীলোকেরা সতত নতুন শিক্ষা শিখতে চেষ্টা করে; কিন্তু সেই সত্যকে পুরোপুরি হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম হয় না৷ 8 আর যাম্নি ও যাম্বির কথা মনে কর, তারা মোশির বিরোধিতা করেছিল৷ সেইভাবে এই লোকেরাও সত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, এদের মন জঘন্য এবং এরা প্রকৃত বিশ্বাসের অনুসারী হতে পারে নি; 9 কিন্তু এরা তাদের কাজে কৃতকার্য় হতে পারবে না৷ সবাই দেখতে পাবে য়ে তারা কতো নির্বোধ৷ যাম্নি ও যাম্বির বেলায়ও তাই হয়েছিল৷ 10 কিন্তু তুমি আমার সব কথাই জান৷ যা আমি শেখাই, য়েভাবে আমি চলি সবই তুমি জান৷ আমার জীবনের কি লক্ষ্য তাও তুমি জান৷ তুমি আমার বিশ্বাস, ধৈর্য়, ভালোবাসা ও সহিষ্ণুতার কথা জান৷ 11 আমার জীবনে নির্য়াতন ও কষ্টভোগের কথাও তুমি জান৷ আন্তিয়খিয়া, ইকনিয় ও লুস্ত্রায় যখন আমি গিয়েছিলাম, সে সব জায়গায় আমার কি অবস্থা হয়েছিল, কত কষ্টের মধ্যে আমাকে পড়তে হয়েছিল তা তুমি জান; কিন্তু সেই সময় দুঃখ কষ্ট থেকে প্রভু আমাকে উদ্ধার করেছেন৷ 12 খ্রীষ্ট যীশুতে যত লোক ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে চলতে চাইবে তাদের সকলকে নির্যাতিত হতে হবেই৷ 13 কিন্তু দুষ্ট লোকেদের এবং ঠগবাজদের ক্রমশঃই অধঃপতন ঘটবে৷ তারা পরকে ঠকাবে, নিজেরাও ঠকবে৷ 14 কিন্তু তুমি যা শিখেছ তাতেই স্থির থাক, এবং দৃঢ়ভাবে তা বিশ্বাস কর কারণ তুমি জান কাদের কাছ থেকে তুমি সেই শিক্ষা পেয়েছ৷ 15 বাল্যকাল থেকে পবিত্র শাস্ত্রের সঙ্গে তোমার পরিচয় হয়েছে৷ শাস্ত্রগুলিই তোমাকে সেই প্রজ্ঞা দেবে যা খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণের পথে নিয়ে যায়৷ 16 সমস্ত শাস্ত্রই ঈশ্বর দিয়েছেন এবং অনুয়োগ, সংশোধন ও ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপনের জন্য প্রতিটি বাক্যই সঠিক নির্দেশ দিতে পারে৷ 17 য়েন তার দ্বারা ঈশ্বরের লোক পরিপক্ক ও সমস্ত সত্ কর্মের জন্য সুসজ্জিত হয়৷
1 ঈশ্বরকে ও যীশু খ্রীষ্টকে সামনে রেখে আমি তোমাকে এক আদেশ দিচ্ছি৷ খ্রীষ্ট যীশু, যিনি জীবিত ও মৃতদের বিচার করবেন, তাঁর এক রাজ্য আছে আর তিনি আবার ফিরে আসছেন, তাই আমি তোমাকে এই আদেশ দিচ্ছি; 2 লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার কর৷ ভাল কি মন্দ সব সময়ের জন্য তুমি সর্বদাই প্রস্তুতে থেকো৷ তাদের ভুল কাজ সম্বন্ধে বোধ জাগাও৷ তারা ভুল পথে গেলে তাদের থামতে বলো, সত্ কার্য়ে তাদের উত্সাহিত করো৷ সম্পূর্ণ ধৈর্য্যের সঙ্গে ও উচিত শিক্ষার মাধ্যমে এইসব কাজ কর৷ 3 কারণ এমন সময় আসবে, য়ে সময় লোকেরা সত্য শিক্ষা গ্রহণ করতে চাইবে না; কিন্তু নিজেদের মনোমত কথা শোনার জন্য নিজের নিজের পছন্দ মতো বহু গুরু মরবে৷ 4 লোকেরা সত্য থেকে কান ফিরিয়ে নিয়ে মনগড়া কাহিনীর দিকে মন দেবে৷ 5 কিন্তু তুমি সব সময়ে সংযত থেকো, ধৈর্য়ের সঙ্গে সব কষ্ট সহ্য কর এবং সুসমাচার প্রচার কর৷ ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারক হিসাবে তোমার কর্তব্য পালন করে চল৷ 6 ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আমার জীবন এর মধ্যেই পেয় অর্য়্ঘের মতো ঢালা হয়েছে৷ আমার যাবার সময় হয়ে এসেছে৷ 7 আমি ভালভাবেই লড়াই করেছি৷ নির্দিষ্ট দৌড় শেষ করেছি৷ অটুট রেখেছি আমার খ্রীষ্ট বিশ্বাস৷ 8 এখন অবধি সঠিক জীবনযাপন করার জন্য আমার জন্য এক বিজয় মুকুট তোলা আছে, সেই ন্যায়পরায়ণ বিচারক প্রভু সেই মহাদিনে আমাকে তা দেবেন৷ হ্যাঁ, সেই মুকুট তিনি আমায় দেবেন৷ কেবল আমাকে নয়, বরং যত লোক তাঁর পুনরাগমণের জন্য ভালোবাসার সাথে অধীরভাবে প্রতীক্ষা করেছে, এ মুকুট তাদের সকলকে দেবেন৷ 9 তুমি যত শিগ্গির পার আমার কাছে চলে এস, 10 কারণ দীমা এই জগতকে ভালবেসে আমাকে ছেড়ে থিষলনীকীতে চলে গিয়েছে৷ ক্রীষ্কেন্ত গালাতীয়ায় আর তীত দাল্মাতিয়াতে গেছে৷ 11 একা লূক কেবল আমার সঙ্গে আছেন৷ তুমি যখন আসবে মার্ককে সঙ্গে করে এস, এখানকার কাজে সে আমায় সাহায্য করতে পারবে৷ 12 তুখিককে আমি ইফিষে পাঠিয়েছি৷ 13 ত্রোয়াতে কার্পের কাছে য়ে শালখানি রেখে এসেছি, তুমি আসার সময় সেটি এবং পুস্তকগুলি, বিশেষ করে চামড়ার ওপর লেখা পুস্তকগুলি সঙ্গে করে এনো; ওগুলি আমার চাই৷ 14 আলেকসান্দর য়ে পিতল ও তামার কাজ করে সে আমার অনেক ক্ষতি করেছে৷ প্রভু তার কাজের সমুচিত প্রতিফল তাকে দেবেন৷ 15 তুমিও সেই লোক থেকে সাবধান থেকো; কারণ আমরা যা কিছু প্রচার করেছি, সে ভীষণভাবে তার বিরোধিতা করেছে৷ 16 আমাকে যখন প্রথমবার বিচারকের সামনে দাঁড় করানো হয়েছিল, তখন আমায় সাহায্য করতে কেউ আমার পাশে ছিল না; সকলে পালিয়ে গেল৷ আমি প্রার্থনা করি তাদের এই অপরাধ য়েন গন্য না হয়৷ 17 কিন্তু প্রভু আমার পাশে দাঁড়ালেন এবং আমাকেশক্তিশালী করলেন, যাতে আমি সেই বার্তা সম্পূর্ণভাবে প্রচার করতে পারি এবং য়েন সমস্ত অইহুদী জনগণ সেই সুসমাচার শুনতে পায়, আর আমি সিংহের মুখ থেকে রক্ষা পেলাম৷ 18 কেউ আমার ক্ষতি করতে চাইলে প্রভু আমাকে রক্ষা করবেন৷ প্রভু তাঁর স্বর্গীয় রাজ্যে আমাকে নিশ্চয়ই নিরাপদে নিয়ে যাবেন৷ যুগে যুগে ঈশ্বরের মহিমা হোক্৷ আমেন৷ 19 প্রিষ্কাকে ও আকিল্লাকে এবং অনীষিফরের পরিবারকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 20 ইরাস্ত করিন্থে থেকে গেছেন, এবং এফিম অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমি তাকে সিলীতে রেখে এসেছি৷ 21 তুমি শীতকালের আগে অবশ্যই আসার চেষ্টা করো৷ উবুল, পুদেন্ত, লীন, ক্লৌদিয়া ও এখানকার সমস্ত ভাই ও বোনেরা তোমায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 22 প্রভু তোমার আত্মায় বিরাজ করুন৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমার সহবর্তী হোক্৷
1 ঈশ্বরের দাস এবং যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিত দূত পৌলের কাছ থেকে ঈশ্বর যাদের মনোনীত করেছেন তাদের খ্রীষ্ট বিশ্বাসের পথে এগিয়ে আনতে ও ঐশ্বরিক সত্য শিক্ষা দিতে আমাকে দূত হিসাবে পাঠানো হয়েছে; আর সেই সত্যই আমাদের জ্ঞাত করে কিভাবে ঈশ্বরের সেবা করতে হয়৷ 2 অনন্ত জীবনের প্রত্যাশা থেকেই আমাদের সেই বিশ্বাস ও জ্ঞান লাভ হয়৷ সময় শুরুর পূর্বেই ঈশ্বর সেই জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আর ঈশ্বর মিথ্যা বলেন না৷ 3 ঠিকসময়ে ঈশ্বর তাঁর বার্তা জগতের কাছে প্রচারের মাধ্যমেই তা প্রকাশ করেছেন৷ ঈশ্বর সেই কাজের ভার আমার হাতে তুলে দিয়েছেন৷ আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে আমি সেই বার্তা প্রচার করেছি৷ 4 এই চিঠি তীতের প্রতি লেখা হয়েছে৷ একই বিশ্বাসের ভাগীদার হওয়ায় তুমি আমার প্রকৃত সন্তান৷ পিতা ঈশ্বর ও আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট তোমায় অনুগ্রহ ও শান্তি দিন৷ 5 আমি তোমাকে ক্রীতী দ্বীপে রেখে এলাম, যাতে বাকি কাজগুলি তুমি শেষ করতে পার, এবং আমার নির্দেশ অনুসারে প্রতিটি শহরের মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিযোগ করতে পার৷ 6 প্রাচীনরূপে গন্য হবে সেই ব্যক্তি, য়ে কোন দোষে দোষী নয়, য়ে কেবল একজন স্ত্রীর স্বামী, যার ছেলেমেয়েরা খ্রীষ্টবিশ্বাসী এবং বেয়াড়া বা অবাধ্য বলে পরিচিত নয়৷ 7 একজন প্রাচীনের কাজ হল ঈশ্বরের কাজে তত্ত্বাবধান করা সুতরাং তাকে নির্দোষ, নম্র, উদারচিত্ত এবং ক্রোধে ধীর হতে হবে, মাতাল মারকুটে ও লোক ঠকিয়ে ধনী হবার চেষ্টা সে করবে না৷ 8 একজন প্রাচীন বরং লোকেদের সাহায্য করার জন্য তার গৃহে তাদের আতিথ্য দিতে প্রস্তুত থাকবে, যা ভাল তাই ভালবাসবে; সে বিচক্ষণ, ন্যায়পরায়ণ, পবিত্র ও জিতেন্দরিয় হবে৷ 9 আমরা য়ে সত্য প্রচার করি তা সে বিশ্বস্তভাবে অনুসরণ করবে; লোকেদের সঠিকভাবে শিক্ষা দিতে পারবে এবং যাঁরা সত্যের বিরোধী তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে পারবে৷ 10 কারণ অনেকে আছে যাঁরা অবাধ্য স্বভাবের মানুষ৷ যাঁরা অসার কথাবার্তা বলে বেড়ায় ও অনেককে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যায়৷ বিশেষ করে আমি সেই লোকদের কথা বলছি, যাঁরা বলছে য়ে সব অইহুদী খ্রীষ্টীয়ানদের সুন্নত হওয়া চাই৷ 11 একজন প্রাচীন নিশ্চয়ই দেখিয়ে দিতে পারবেন য়ে এইসব লোকেদের চিন্তা ভুল ও তাদের কথাবার্তা অসার, অবশ্যই তাদের মুখ বন্ধ করে দিতে পারবেন, কারণ তারা তাদের য়ে বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া উচিত নয় তা শিক্ষা দিয়ে তারা বহু পরিবারের সবাইকে বিপর্য়স্ত করেছে৷ তারা অসত্ উপায়ে অর্থ লাভের জন্য এইরকম করে বেড়ায়৷ 12 তাদেরই একজন ক্রীতীয় ভাববাদী বলছেন, ‘ক্রীতীয়েরা সর্বদাই মিথ্যাবাদী, বন্য জন্তু এবং অলস পেটুক,’ 13 আর একথা সত্যি, এইজন্য তুমি ঐ লোকদের বল য়ে তারা ভুল করছে, তুমি তাদের প্রতি কড়া হও যাতে তাদের বিশ্বাস দৃঢ় হয়, 14 তখন তারা ইহুদীদের মিথ্যা গল্প গ্রহণ করবে না এবং যাঁরা সত্য থেকে সরে গেছে এরকম লোকদের আজ্ঞা মানবে না৷ 15 অন্তরে যাঁরা শুচি তাদের কাছে সব কিছুই শুচি; কিন্তু যাদের অন্তর কলুষিত ও যাঁরা অবিশ্বাসী তাদের কাছে কিছুই শুচি নয়, বাস্তবে তাদের মন ও বিবেক কলুষিত হয়ে পড়েছে৷ 16 তারা স্বীকার করে য়ে ঈশ্বরকে মানে, কিন্তু কাজকর্মে তাঁকে অস্বীকার করে৷ তারা অতিশয় ঘৃন্য, তারা অবাধ্য এবং কোন ভাল কাজ করার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অয়োগ্য৷
1 সত্য শিক্ষা অনুসরণের জন্য তুমি অবশ্যই লোকেদের এইসব কাজ করতে বলবে৷ 2 বৃদ্ধদের বল, য়েন তাঁরা আত্মসংযমী, গন্ভীর ও বিজ্ঞ হন৷ তাঁরা য়েন বিশ্বাসে, ভালোবাসায় ধৈর্য়ে দৃঢ় হন৷ 3 সেইভাবে বৃদ্ধদের বল তাঁরা য়েন আচরণে পবিত্র হন৷ তাঁরা য়েন অপরের সম্বন্ধে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে না বেড়ান ও দ্রাক্ষারসপানে আসক্ত না হন৷ কিন্তু তাঁরা য়েন সত্ শিক্ষা দিয়ে বেড়ান৷ 4 এবং যুবতীদের শিক্ষা দেন য়েন তারা তাদের স্বামীদের ও সন্তানদের ভালবাসে৷ 5 তারা য়েন বিচক্ষণ, পরিশুদ্ধ, গৃহকার্য়ে নিষ্ঠাবতী, দয়ামযী ও স্বামীর প্রতি অনুগত হয় তাহলে কেউ ঈশ্বরের বার্তা সম্বন্ধে বিরূপ মন্তব্য করতে পারবে না৷ 6 সেইভাবে যুবকদের বল য়েন তারা সব কিছুতেই আত্মসংযম বজায় রাখে; 7 আর তুমি নিজে সব বিষয়ে তাদের সামনে সত্ কাজের আদর্শ হও৷ তুমি যখন শিক্ষা দেবে তখন সততা ও গাম্ভীর্য়ের সঙ্গে তা দিও৷ 8 যখন কথা বলবে তখন সত্য বলো য়েন যা তুমি বলছ কেউ তার সমালোচনা করতে না পারে৷ এর ফলে তোমার বিপক্ষরা লজ্জায় পড়বে, কারণ তোমার সম্পর্কে সে খারাপ কিছুই বলতে পারবে না৷ 9 দাসদের তুমি এই শিক্ষা দাও; তারা য়েন সবসময় নিজেদের মনিবদের আজ্ঞা পালন করে, তাদের সন্তুষ্ট রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে, এবং মনিবদের কথার প্রতিবাদ না করে৷ 10 তারা য়েন মনিবদের কিছু চুরি না করে এবং তাদের মনিবদের বিশ্বাসভাজন হয়৷ এইভাবে তাদের সমস্ত, আচরণে প্রকাশ পাবে য়ে আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের শিক্ষা উত্তম৷ 11 ঐভাবেই আমাদের চলা উচিত কারণ ঈশ্বরের অনুগ্রহ প্রকাশিত হয়েছে৷ সে অনুগ্রহ প্রত্যেক মানুষকে রক্ষা করতে পারে, সেই অনুগ্রহ আমাদের দেওয়া হয়েছে৷ 12 সেই অনুগ্রহ আমাদের শিক্ষা দেয়, য়েন আমরা ঈশ্বরবিহীন জীবনযাপন না করি ও জগতের কামনা বাসনা অগ্রাহ্য় করে এই বর্তমান জগতে আত্মনিয়ন্ত্রিত,ন্যায়পরায়ণ এবং ধার্মিকভাবে জীবনযাপন করি৷ 13 আমাদের মহান ঈশ্বর এবং ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের মহিমার আবির্ভাবের জন্য যখন অপেক্ষা করছি, তখন য়েন আমরা সবাই এইভাবেই চলি৷ তিনিই আমাদের মহান প্রত্যাশা, যিনি মহিমা নিয়ে আসবেন৷ 14 খ্রীষ্ট আমাদের জন্যে নিজেকে দিলেন, যাতে সমস্ত মন্দ থেকে আমাদের উদ্ধার করতে পারেন, যাতে আমরা সত্ কর্মে আগ্রহী ও পরিশুদ্ধ মানুষ হিসেবে কেবল তাঁর হই৷ 15 এসব কথা বল এবং পূর্ণ কর্তৃত্ত্বের সঙ্গে তাদের উত্সাহিত কর ও তিরস্কার কর৷ কেউ য়েন তোমাকে তুচ্ছ করতে না পারে৷
1 তুমি লোকদের মনে করিয়ে দিও, য়েন তারা দেশের সরকার ও কর্তৃপক্ষের অনুগত হয়৷ তাদের কথামতো চলে য়ে কোন সত্ কাজ করতে য়েন প্রস্তত থাকে৷ 2 বিশ্বাসীদের বল তারা য়েন কারও বিষয়ে মন্দ না বলে, লোকের সঙ্গে ঝগড়া না করে, সমস্ত মানুষের সাথে য়েন অমাযিক ও ভদ্র ব্যবহার করে৷ 3 কারণ একসময়ে আমরাও নির্বোধ ও অবাধ্য ছিলাম৷ অন্য়ের দ্বারা বিপথে চালিত হয়ে নানা রকমের মন্দ ইচ্ছা ও কুত্সিত আনন্দের দাস ছিলাম৷ আমাদের জীবন অশুদ্ধ কামনা ও ঈর্ষায় পূর্ণ ছিল৷ অন্যরা আমাদের ঘৃণা করত আর আমরাও পরস্পরকে ঘৃণা করতাম৷ 4 কিন্তু যখন আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের দয়া ও মনুষ্যপ্রীতি প্রকাশিত হল, 5 তখন তিনি তাঁর দয়ার গুণে আমাদের রক্ষা করলেন৷ ঈশ্বরের কাছে য়োগ্য বলে বিবেচিত হওয়ার জন্য, ভাল কাজ করেছিলাম বলে নয়৷ তিনি আমাদের পরিষ্কার করে পরিত্রাণপ্রাপ্ত নতুন মানুষ করলেন এবং পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আমরা নতুন হলাম৷ 6 সেই পবিত্র আত্মাকে ঈশ্বর আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা আমাদের ওপরে বিপুল পরিমাণে বর্ষণ করলেন৷ 7 তাঁর অনুগ্রহে আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছি এবং ঈশ্বর তাঁর আত্মাকে আমাদের দিয়েছেন য়েন আমরা অনন্ত জীবন পেতে পারি৷ এটাই তো আমাদের প্রত্যাশা৷ 8 আর এই শিক্ষা সত্য৷ আমি চাই য়ে তুমি নিশ্চিতভাবে জানতে পার য়ে লোকেরা এসব বুঝতে পারছে, তাহলে যাঁরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী তারা নিজেদের জীবন মঙ্গলকর্মে উত্সর্গ করার জন্য উত্সুক থাকবে৷ এসবই উত্তম বিষয় এতে সবার সাহায্য হবে৷ 9 অর্থহীন বাক্বিতণ্ডা, বংশতালিকা নিয়ে আলোচনা, মোশির বিধি-ব্যবস্থার শিক্ষা নিয়ে ঝগড়া এবং লড়াই করে এমন লোকদের এড়িয়ে চলবে, কারণ এগুলো অপ্রযোজনীয় ও নিরর্থক৷ 10 য়ে ব্যক্তি তর্কবিতর্ক করতে চায় তাকে প্রথম ও দ্বিতীয়বার সাবধান করার পরও যদি সে না শোনে তখন তাকে এড়িয়ে চলবে; 11 কারণ তুমি জেনো, এধরণের লোকরা মন্দ পথে ও পাপে পূর্ণ জীবনযাপন করে৷ তার পাপই প্রমাণ করে য়ে সে ভুল পথে যাচ্ছে৷ 12 আমি তোমার কাছে আর্ত্তিমাকে ও তুখিককে পাঠাবো; আমার সঙ্গে নিকপলিতে দেখা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করো, কারণ শীতকালটা আমি ওখানেই কাটাবো ঠিক করেছি৷ 13 আইনজীবি সীনা ও আপল্লো ওখান থেকে রওনা হবেন৷ তাঁদের যাত্রাপথে যতদূর পারো সাহায্য করো৷ ভাল করে দেখো তাঁদের যা কিছু প্রযোজন সবই য়েন তাঁরা পান৷ 14 আমাদের লোকরা য়েন সত্কর্মে উদ্য়োগী হয়, এইভাবে যার যা প্রযোজন তা মেটাতে তাদের সাহায্য করে৷ যদি তারা এটা করে তবে তাদের জীবন নিষ্ফল হবে না৷ 15 আমার সঙ্গীরা সকলে তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ আমাদের বিশ্বাসের দরুন যাঁরা আমাদের ভালবাসেন তাদের শুভেচ্ছা জানিও৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক্৷
1 পৌল, যীশু খ্রীষ্টের বন্দী এবং আমাদের ভাই তীমথিয়, 2 আমাদের প্রিয় বন্ধু ও সহকর্মী ফিলীমন ও বোন আপ্পিয়া এবং আমাদের সহসেনা আর্খিপ্পা; এবং য়ে মণ্ডলী ফিলীমনের ঘরে উপাসনার জন্য সমবেত হন তাদের সকলের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি৷ 3 আমাদের পিতা ঈশ্বর এবং প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও শান্তি, তোমাদের সহবর্তী হোক্৷ 4 আমি যখন প্রার্থনার সময় তোমাকে মনে করি, তখন তোমার জন্য সর্বদা আমার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 5 প্রভু যীশুর প্রতি তোমার বিশ্বাস ও ঈশ্বরের সমস্ত পবিত্র লোকের প্রতি তোমার ভালবাসার কথা আমি শুনতে পাই ও ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই৷ 6 আমি প্রার্থনা করি আমরা য়ে বিশ্বাসের অংশীদার তা য়েন তোমাকে খ্রীষ্টের মহত্ গুণগুলি বুঝতে সাহায্য করে৷ 7 ভাই, ঈশ্বরের লোকদের প্রতি তুমি য়ে ভালবাসা দেখিয়েছ তা তাদের নতুন শক্তির য়োগান দিয়েছে, আর এতে আমি গভীর আনন্দ ও শান্তি পেয়েছি৷ 8 তাই আমি খ্রীষ্টের নামে সাহসী হয়ে যা সঠিক তা করার জন্য তোমাকে আদেশ করতে পারি৷ 9 কিন্তু আমি তোমাকে বরং তোমার ভালবাসার জন্য এটা করতে অনুরোধ করবো৷ আমি পৌল, এখন বৃদ্ধ হয়েছি, খ্রীষ্ট যীশুর জন্য আমি বন্দী৷ 10 কারাগারে থাকাকালীন য়ে ওনীসিমাসকে পুত্ররূপে পেয়েছি তার হয়ে তোমাকে আমার অনুরোধ জানাই৷ 11 সে আগে তোমার উপয়োগী ছিল না কিন্তু এখন তোমার ও আমার উভয়েরই উপয়োগী৷ 12 তাকেই আমি তোমার কাছে ফেরত্ পাঠাচ্ছি, তার সঙ্গে য়েন আমার নিজের প্রাণই পাঠাচ্ছি৷ 13 আমি তাকে আমার কাছে রাখতে চেয়েছিলাম যাতে সুসমাচারের জন্য আমি কারাগারে থাকাকালীন সে তোমার হয়ে আমার সেবা করতে পারে৷ 14 তোমার অনুমতি না নিয়ে আমি কিছু করতে চাই নি৷ আমি চাই তুমি য়েন বাধ্য হয়ে নয় বরং নিজের ইচ্ছানুসারেই আমার এই উপকারটুকু করতে পার৷ 15 কারণ হয়তো এই জন্যই ওনীসিমাস কিছু কালের জন্য আলাদা হয়েছিল, য়েন তুমি চিরকালের জন্য তাকে পেতে পার৷ 16 এখন তাকে আর কেবলমাত্র তোমার দাসরূপে নয়, দাসের থেকে শ্রেয়, স্নেহের ভাইয়ের মতো ফিরে পেতে পারো৷ সে আমার প্রিয়, কিন্তু তোমার কাছে প্রভুর ভাই ও মানুষ হিসাবে সে আরো প্রিয় হবে৷ 17 যদি আমাকে তোমার বন্ধু বলে মানো তবে ওনীসিমাস আবার গ্রহণ করো৷ তোমরা আমাকে য়েভাবে অভ্য়র্থনা জানাও ওনীসিমাসকে সেইভাবে অভ্য়র্থনা জানিও৷ 18 ওনীসিমাস যদি তোমার কোন ক্ষতি করে থাকে, বা তোমার কিছু ধারে তবে তা আমার দেনা হিসাবে ধরো৷ 19 আমি পৌল, নিজের হাতে এটা লিখলাম, আমিই শোধ করব৷ তুমি তোমার নিজের জীবনের জন্য য়ে আমার কাছে ঋণী, সে বিষয়ে আমি কিছুই বলব না৷ 20 হ্যাঁ ভাই, তোমার কাছে থেকে আমি প্রভুর প্রতিনিধি হিসাবে কিছু পেতে চাই৷ আমার হৃদয়কে খ্রীষ্টে উত্সাহিত কর৷ 21 তুমি আমার অনুরোধ মানবে এই বিশ্বাসে আমি তোমাকে এই চিঠি লিখছি৷ তাছাড়া আমি জানি য়ে আমি যা বলছি তুমি তার থেকেও বেশী করবে৷ 22 আবার বলি আমার থাকার জন্য ঘরও ঠিক করে রেখো; কারণ আশা করছি, ঈশ্বর তোমাদের প্রার্থনার উত্তর দেবেন এবং শিগ্গির আমি তোমাদের কাছে য়েতে পারব৷ 23 খ্রীষ্ট যীশুতে আমার সহবন্দী ইপাফ্রা তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 24 মার্ক, আরিষ্টার্খ, দীমা এবং লূক আমার এই সহকর্মীরাও তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 25 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের আত্মার সহায় হোক্৷
1 অতীতে ঈশ্বর ভাববাদীদের মাধ্যমে বহুবার নানাভাবে আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন৷ 2 এখন এই শেষের দিনগুলোতে ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আবার কথা বললেন৷ ঈশ্বর তাঁর পুত্রের দ্বারাই সমগ্র জগত সৃষ্টি করেছেন৷ তাঁর পুত্রকেই সবকিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন৷ 3 একমাত্র ঈশ্বরের পুত্রই ঈশ্বরের মহিমার ও তাঁর প্রকৃতির মূর্ত প্রকাশ৷ ঈশ্বরের পুত্র তাঁর পরাক্রান্ত বাক্যের দ্বারা সবকিছু ধরে রেখেছেন৷ সেই পুত্র মানুষকে সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ করেছেন৷ তারপর স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমার ডানপাশের আসনে বসেছেন৷ 4 ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে এমন এক নাম দিয়েছেন যা স্বর্গদূতদের নাম থেকে শ্রেষ্ঠ; আর স্বর্গদূতদের তুলনায় তিনি হয়ে উঠেছেন আরো মহান৷ 5 কারণ ঈশ্বর ঐ স্বর্গদূতদের মধ্যে কাকে কখন বলেছিলেন,‘তুমি আমার পুত্র; আজ আমি তোমার পিতা হয়েছি৷’গীতসংহিতা 2:7আবার ঈশ্বর কখনই বা স্বর্গদূতদের বলেছেন,‘আমি তার পিতা হব আর সে আমার পুত্র হবে৷’2 শমূয়েল 7:14 6 আবার তাঁর প্রথম পুত্রকে যখন তিনি জগতে নিয়ে এলেন তখন ঈশ্বর বললেন,‘ঈশ্বরের সমস্ত স্বর্গদূতরা তাঁর উপাসনা করুক৷’দ্বিতীয় বিবরণ 32:43 7 স্বর্গদূতদের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন:‘আমার স্বর্গদূতদের আমি তৈরী করি বাযুর মতো করে আর আমার সেবকদের আগুনের শিখার মতো করে৷’গীতসংহিতা 104:4 8 কিন্তু তাঁর পুত্রের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন:‘হে ঈশ্বর, তোমার সিংহাসন হবে চিরস্থাযী; আর ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তুমি তোমার রাজ্য শাসন করবে৷ 9 তুমি ন্যায়কে ভালবাস এবং অন্যায়কে ঘৃণা কর৷ এই কারণে তোমার ঈশ্বর তোমাকে পরম আনন্দ দিয়েছেন; তোমার সঙ্গীদের থেকে তোমায় অধিক পরিমাণে দিয়েছেন৷’ গীতসংহিতা 45:6-7 10 ঈশ্বর একথাও বলেছেন:‘হে প্রভু, আদিতে তুমিই পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করেছ; স্বর্গ তোমারই হাতের সৃষ্টি৷ 11 সেসব একদিন অদৃশ্য হয়ে যাবে; কিন্তু তুমিই নিত্যস্থাযী৷ সেসব পোশাকের মতো পুরানো হয়ে যাবে৷ 12 তুমি সেসব পোশাকের মতো গুটিয়ে রাখবে; আর পোশাকের মতো সেগুলির পরিবর্তন হবে৷ কিন্তু তোমার কোন পরিবর্তন হবে না, তোমার অনুগ্রহ শেষ হবে না৷’গীতসংহিতা 102:25-27 13 কিন্তু ঈশ্বর স্বর্গদূতদের মধ্যে কাউকে কখনও বলেন নি:‘আমি তোমার শত্রুদের যতক্ষণ না তোমার পদানত করি, তুমি আমার ডানপাশে বস৷’গীতসংহিতা 110:1 14 ঐ স্বর্গদূতরা কি পরিচর্য়াকারী আত্মা নয়? আর যাঁরা পরিত্রাণ লাভ করেছে তাদের পরিচর্য়া করার জন্যই কি এদের পাঠানো হয় নি?
1 এই জন্য য়ে বাণী আমরা শুনেছি, তাতে আরো ভালভাবে মন দেওয়া আমাদের উচিত, য়েন আমরা তার প্রকৃত পথ থেকে বিচ্যুত না হই৷ 2 য়ে শিক্ষা স্বর্গদূতদের মুখ দিয়ে ঈশ্বর জানিয়েছিলেন ও যা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছিল, সেই শিক্ষা যখনই ইহুদীরা অমান্য করে অবাধ্যতা দেখিয়েছে - তাদের শাস্তি হয়েছে, 3 তখন এমন মহত্ এই পরিত্রাণ যা আমাদেরই জন্য এসেছে তা অগ্রাহ্য় করলে আমরা কিভাবে রক্ষা পাব? এই পরিত্রাণের কথা প্রভু স্বয়ং ঘোষণা করেছিলেন; আর যাঁরা তাঁর কাছ থেকে এই বাণী শুনেছিল, তারাই আমাদের কাছে এই পরিত্রাণের সত্যতা প্রমাণ করল৷ 4 ঈশ্বরও নানা সঙ্কেত, আশ্চর্যজনক কাজ, অলৌকিক ঘটনা ও মানুষকে দেওয়া পবিত্র আত্মার নানা বরদানের মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছানুয়াযী এবিষয়ে সাক্ষ্য রেখেছেন৷ 5 বাস্তবিক য়ে জগতের বিষয়ে আমরা বলছি, ঈশ্বর সেই ভাবী জগতকে তাঁর স্বর্গদূতদের কর্তৃত্ত্বাধীন রাখেন নি৷ 6 এটা শাস্ত্রের কোন এক জায়গায় লেখা আছে:‘হে ঈশ্বর, মানুষ এমন কি য়ে তার বিষয়ে তুমি চিন্তা কর? অথবা মানবসন্তানই বা কে য়ে তুমি তার কথা ভাব? 7 তুমি তাকে অল্প সময়ের জন্যই স্বর্গদূতদের থেকে নীচুতে রেখেছিলে; কিন্তু তুমি তাকেই পরালে সম্মান ও মহিমার মুকুট৷ 8 আর সব কিছুই তুমি রাখলে তার পদতলে৷’ গীতসংহিতা 8:4-6সবকিছু তার অধীনে করাতে কোন কিছুই তার কর্তৃত্বের বাইরে রইল না, যদিও এখন আমরা অবশ্য সব কিছু তার অধীনে দেখছি না৷ 9 কিন্তু আমরা যীশুকে দেখেছি, য়াঁকে অল্পক্ষণের জন্য স্বর্গদূতদের থেকে নীচে স্থান দেওয়া হয়েছিল৷ সেই যীশুকেই এখন সম্মান আর মহিমার মুকুট পরানো হয়েছে৷ কারণ তিনি মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করেছেন এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহে সকল মানুষের জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন৷ 10 কেবল ঈশ্বরই সেই জন য়াঁর দ্বারা সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে এবং সবকিছুই তাঁর মহিমার জন্য, তাই অনেক সন্তানকে তাঁর মহিমার ভাগীদার করতে ঈশ্বর প্রযোজনীয় কাজটিই করলেন৷ তিনি তাদের পরিত্রাণের প্রবর্তক যীশুকে নির্য়াতন ভোগের মাধ্যমে সিদ্ধ ত্রাণকর্তা করেছেন৷ 11 যিনি পবিত্র করেন আর যাঁরা পবিত্র হয়, তারা সকলে এক পরিবারভুক্ত৷ সেই কারণেই তিনি তাদের ভাই বলে ডাকতে লজ্জিত নন৷ 12 যীশু বলেন,‘হে ঈশ্বর, আমি আমার ভাইযর কাছে তোমার নাম প্রচার করব, মণ্ডলীর মধ্যে তোমার প্রশংসা গান করব৷’ গীতসংহিতা 22:22 13 তিনি আবার বলেছেন, ‘আমি ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করব৷’যিশাইয় 8:17তিনি আবার এও বলেছেন, ‘দেখ, এই আমি ও আমার সঙ্গে সেই সন্তানদের, ঈশ্বর আমাকে যাদের দিয়েছেন৷’যিশাইয় 8:18 14 ভাল, সেই সন্তানরা যখন রক্তমাংসের মানুষ, তখন যীশু নিজেও তাদের স্বরূপের অংশীদার হলেন৷ যীশু এইরকম করলেন য়েন মৃত্যুর মাধ্যমে মৃত্যুর অধিপতি দিয়াবলকে ধ্বংস করতে পারেন; 15 আর যাঁরা মৃত্যুর ভয়ে যাবজ্জীবন দাসত্বে কাটাচ্ছে তাদের যুক্ত করেন৷ 16 কারণ এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছেয়ে তিনি স্বর্গদূতদের সাহায্য করেন না, কেবল অব্রাহামের বংশধরদেরই সাহায্য করেন৷ 17 সেইজন্য সবদিক থেকে যীশুকে নিজের ভাইয়ের মতো হতে হয়েছে যাতে তিনি মানুষের পাপের ক্ষমার জন্য একজন দয়ালু ও বিশ্বস্ত মহাযাজকরূপে ঈশ্বরের সাক্ষাতে দাঁড়াতে পারেন৷ 18 যীশু নিজে পরীক্ষা ও দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে গেছেন বলে যাঁরা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাদের যীশু সাহায্য করতে পারেন৷
1 তাই তোমরা সকলে যীশুর বিষয়ে চিন্তা কর৷ ঈশ্বর যীশুকে আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন৷ তিনি আমাদের ধর্ম বিশ্বাসের মহাযাজক৷ আমার পবিত্র ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের বলছি তোমরা এক স্বর্গীয় আহ্বান পেয়েছ৷ 2 ঈশ্বর যীশুকে আমাদের কাছে পাঠালেন আর তাঁকে তিনি আমাদের মহাযাজক করলেন৷ মোশির মতন যীশুও ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন৷ যীশুর কাছে ঈশ্বর যা কিছু চেয়েছিলেন, ঈশ্বরের সেই গৃহরূপ মণ্ডলীতে তিনি সে সবই করলেন৷ 3 কেউ যখন কোন গৃহ নির্মাণ করে তখন গৃহ থেকে গৃহনির্মাতার মর্য়াদা অধিক হয়, যীশুর বেলায়ও ঠিক তাই হয়েছে, সুতরাং মোশির থেকে অধিক সম্মান যীশুরই প্রাপ্য়৷ 4 প্রত্যেক গৃহ কেউ না কেউ নির্মাণ করে, কিন্তু ঈশ্বর সবকিছু নির্মাণ করেছেন৷ 5 মোশি ঈশ্বরের গৃহে সেবকরূপে বিশ্বস্তভাবে কাজ করেছিলেন আর ঈশ্বর ভবিষ্যতে যা বলবেন তা লোকদের কাছে মোশিই বললেন৷ 6 কিন্তু খ্রীষ্ট পুত্র হিসাবে ঈশ্বরের গৃহের কর্তা; আমরা বিশ্বাসীরাই তাঁর গৃহ, আর তাই থাকব যদি আমরা আমাদের সেই মহান প্রত্যাশা সম্পর্কে সাহস ও গর্ব নিয়ে চলি৷ 7 তাই পবিত্র আত্মা য়েমন বলছেন:‘আজ, তোমরা যদি ঈশ্বরের রব শোন, 8 অতীত দিনের মতো হৃদয় কঠিন করো না, য়ে দিন তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলে; সেদিন তোমরা প্রান্তরে ঈশ্বরের পরীক্ষা করেছিলে৷ 9 সেই প্রান্তরে তোমাদের পিতৃপুরুষরা চল্লিশ বছর ধরে আমার সমস্ত কীর্তি দেখতে পেয়েছিল, তবু তারা আমার ধৈর্য্য পরীক্ষা করল৷ 10 তাই আমি এই জাতির ওপর ক্রুদ্ধ হলাম ও বললাম, ‘এরা সব সময় ভুল চিন্তা করে, এই লোকেরা কখনও আমার পথ বুঝল না৷’ 11 তখন আমি ক্রুদ্ধ হয়ে এই শপথ করলাম:‘তারা কখনই আমার বিশ্রাম স্থানে প্রবেশ করতে পারবে না৷’ গীতসংহিতা 95:7-11 12 আমার ভাই ও বোনেরা, দেখো, তোমরা সতর্ক থেকো, তোমাদের মধ্যে কারো য়েন দুষ্ট ও অবিশ্বাসী হৃদয় না থাকে যা জীবন্ত ঈশ্বর থেকে তোমাদের দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়৷ 13 তোমরা দিনের পর দিন একে অপরকে উত্সাহিত কর যতক্ষণ সময় ‘আজ’ আছে৷ পাপের ছলনা য়েন তোমাদের হৃদয়কে নির্মম না করে৷ 14 শুরুতে আমাদের য়ে বিশ্বাস ছিল যদি শেষ পর্যন্ত আমরা সেই বিশ্বাসে স্থির থাকি তাহলে আমরা সকলেই খ্রীষ্টের সহভাগী৷ 15 শাস্ত্র তো এই কথা বলে:‘আজ যদি তোমরা ঈশ্বরের রব শোন, তাহলে তোমাদের অন্তর কঠোর করো না, য়েমন সেই বিদ্রোহের দিনে করেছিলে৷’গীতসংহিতা 95:7-8 16 যাঁরা ঈশ্বরের রব শোনার পরও তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, প্রশ্ন হল তারা কারা? মোশি যাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন তারাই কি নয়? 17 আর কাদের ওপরই বা ঈশ্বর চল্লিশ বছর ধরে ক্রুদ্ধ ছিলেন? সেই লোকদের ওপরে নয় কি যাঁরা পাপ করেছিল ও তার ফলে প্রান্তরে মারা পড়েছিল? 18 তিনি কাদের বিরুদ্ধেই বা শপথ করে বলেছিলেন, ‘এরা আমার বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে পারবে না?’ যাঁরা অবাধ্য হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে কি নয়? 19 তাহলে এখন আমরা দেখলাম য়ে, অবিশ্বাসের দরুনই তারা ঈশ্বরের বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে পারল না৷
1 ঈশ্বর সেই লোকদের য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা এখনও আমাদের জন্য রয়েছে৷ এই সেই প্রতিশ্রুতি য়ে, আমরা প্রবেশ করতে পারব ও ঈশ্বরের বিশ্রাম পাব৷ তাই আমাদের খুব সতর্ক থাকা দরকার, য়েন তোমাদের মধ্যে কেউ ব্যর্থ না হও৷ 2 পরিত্রাণ লাভের জন্য সুসমাচার য়েমন ওদের কাছে প্রচার করা হয়েছিল তেমনি আমাদের কাছেও প্রচার করা হয়েছে, তবু সেই সুসমাচার শিক্ষা শুনেও তাদের কোন শুভ ফল দেখা গেল না, কারণ তারা তা শুনে বিশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করে নি৷ 3 আমরা যাঁরা বিশ্বাস করেছি, তারাই সেই বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে সক্ষম৷ ঈশ্বর য়েমন বলেছিলেন,‘আমি ক্রুদ্ধ হয়ে শপথ করেছি: ‘এরা কখনও আমার বিশ্রামস্থলে প্রবেশ করতে পারবে না৷’’গীতসংহিতা 95:11একথা ঈশ্বর বলেছেন যদিও ঈশ্বরের সমস্ত কাজ জগত্ সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই সমাপ্ত হয়েছিল৷ 4 শাস্ত্রের কোন কোন জায়গায় ঈশ্বর সপ্তাহের সপ্তম দিনের বিষয়ে বলেছিলেন: ‘সৃষ্টির সমস্ত কাজ শেষ করে সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম করলেন৷’ 5 আবার শাস্ত্রের অন্য একস্থানে ঈশ্বর বলছেন: ‘আমার বিশ্রামে ঐ মানুষদের কখনই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না৷’ 6 তবুও একথা এখনও সত্য য়ে কেউ সেই বিশ্রামে প্রবেশ করবে, কিন্তু সেই লোকেরা যাঁরা প্রথমে সুসমাচারের কথা শুনেছিল, অবাধ্য হওয়ার কারণে সেখানে প্রবেশ করে নি৷ 7 তখন ঈশ্বর আবার একটি দিন স্থির করলেন, আর সেই দিনের বিষয়ে তিনি বললেন, ‘আজ’৷ ঈশ্বর এর বহুদিন পর রাজা দাযূদের মাধ্যমে এই দিনটির বিষয়ে বলেছিলেন৷ য়েমন এ বিষয়ে আগেই শাস্ত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে:‘আজ যদি তোমরা ঈশ্বরের রব শোন, তবে অতীত দিনের মতো তোমাদের হৃদয় কঠোর করো না৷’গীতসংহিতা 95:7-8 8 যিহোশূয় তাদের ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত বিশ্রামের মধ্যে নিয়ে য়েতে পারেন নি৷ এবিষয়ে আমরা জানি কারণ ঈশ্বর এরপর আবার বিশ্রামের জন্য আর এক দিনের ‘আজ’ কথা উল্লেখ করেছেন৷ 9 এতে বোঝা যায় য়ে ঈশ্বরের লোকদের জন্য সেই সপ্তম দিনে য়ে বিশ্রাম তা আসছে, 10 কারণ ঈশ্বর তাঁর কাজ শেষ করার পর বিশ্রাম করেছিলেন৷ তেমনি য়ে কেউ ঈশ্বরের বিশ্রামে প্রবেশ করে সেও ঈশ্বরের মত তার কাজ শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করে৷ 11 তাই এস, আমরাও ঈশ্বরের সেই বিশ্রামে প্রবেশ করতে প্রাণপণ চেষ্টা করি, যাতে কেউ অবাধ্যতার পুরানো দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে পতিত না হই৷ 12 ঈশ্বরের বাক্য জীবন্ত ও সক্রিয়৷ তাঁর বাক্য দুপাশে ধারযুক্ত তলোয়ারের ধারের থেকেও তীক্ষ্ন৷ এটা প্রাণ ও আত্মার গভীর সংয়োগস্থল এবং সন্ধি ও অস্থির কেন্দ্র ভেদ করে মনের চিন্তা ও ভাবনার বিচার করে৷ 13 ঈশ্বরের সামনে কোন সৃষ্ট বস্তুই তাঁর অগোচরে থাকতে পারে না, তিনি সব কিছু পরিষ্কারভাবে দেখতে পান৷ তাঁর সাক্ষাতে সমস্ত কিছুই খোলা ও প্রকাশিত রয়েছে, আর তাঁরই কাছে একদিন সব কাজকর্মের হিসেব দিতে হবে৷ 14 আমাদের এক মহাযাজক আছেন, যিনি স্বর্গে ঈশ্বরের সাথে বাস করতে গেছেন৷ তিনি যীশু, ঈশ্বরের পুত্র৷ তাই এসো আমরা বিশ্বাসে অবিচল থাকি৷ 15 আমাদের মহাযাজক যীশু আমাদের দুর্বলতার কথা জানেন৷ যীশু এই পৃথিবীতে সবরকমভাবে প্রলোভিত হয়েছিলেন৷ আমরা য়েভাবে পরীক্ষিত হই যীশু সেইভাবেই পরীক্ষিত হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কখনও পাপ করেন নি৷ 16 সেইজন্যে বিশ্বাসে ভর করে করুণা সিংহাসনের সামনে এসো, যাতে আমাদের প্রযোজনে আমরা দয়া ও অনুগ্রহ পেতে পারি৷
1 প্রত্যেক ইহুদী মহাযাজককে মানুষের ভেতর থেকে মনোনীত করা হয়৷ ঈশ্বর বিষয়ে লোকদের যা করণীয় সেই কাজে সাহায্য করার জন্য যাজককে নিযোগ করা হয়৷ সেই যাজক লোকদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উপহার ও বলি উত্সর্গ করেন৷ 2 অন্যান্য লোকদের মতো মহাযাজকও দুর্বল৷ তিনি অপর মানুষের অজ্ঞতা ও বিচ্য়ুতি থাকলেও তাদের সঙ্গে নরম ব্যবহার করতে সমর্থ য়েহেতু তিনিও অন্যান্য লোকদের মতো নিজের দুর্বলতার দ্বারা বেষ্টিত৷ 3 মহাযাজক মানুষের পাপের জন্য য়ে বলি উত্সর্গ করেন তার সাথে নিজে দুর্বল বলে নিজের পাপের জন্যও তাকে বলি উত্সর্গ করতে হয়৷ 4 মহাযাজক হওয়া সম্মানের বিষয়, আর কেউই নিজের ইচ্ছানুসারে এই মহাযাজকের সম্মানজনক পদ নিতে পারে না৷ হারোণকে য়েমন এই কাজের জন্য ঈশ্বর ডেকেছিলেন, তেমনি প্রত্যেক মহাযাজককে ঈশ্বরই ডাকেন৷ 5 কথাটা খ্রীষ্টের বেলায়ও প্রয়োজ্য৷ খ্রীষ্ট মহাযাজক হয়ে গৌরব দেবার জন্য নিজেকে মনোনীত করেন নি৷ কিন্তু ঈশ্বরই খ্রীষ্টকে মনোনীত করেছেন৷ ঈশ্বর খ্রীষ্টকে বলেছিলেন,‘তুমি আমার পুত্র, আজ আমি তোমার পিতা হলাম৷’ গীতসংহিতা 2:7 6 আর অন্য গীতে ঈশ্বর বললেন, ‘তুমি মল্কীষেদকেরমতো চিরকালের জন্য মহাযাজক হলে৷’গীতসংহিতা 110:4 7 খ্রীষ্ট যখন এ জগতে ছিলেন তখন সাহায্যের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন৷ ঈশ্বরই তাঁকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে সমর্থ আর যীশু ঈশ্বরের নিকট প্রবল আর্তনাদ ও অশ্রুজলের সঙ্গে প্রার্থনা করেছিলেন৷ ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি তাঁর নম্রতা ও বাধ্যতার জন্য ঈশ্বর যীশুর প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন৷ 8 যীশু ঈশ্বরের পুত্র হওয়া সত্ত্বেও দুঃখভোগ করেছিলেন ও দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে বাধ্যতা শিখেছিলেন৷ 9 এইভাবে যীশু মহাযাজকরূপে পূর্ণতা লাভ করলেন; আর তাই তাঁর বাধ্য সকলের জন্য তিনি হলেন চিরকালের পরিত্রাণের পথ৷ 10 ঈশ্বর এইজন্যে তাঁকে মল্কীষেদকের মত মহাযাজক বলে ঘোষণা করলেন৷ 11 এই বিষয়ে আমাদের অনেক কিছু বলার আছে; কিন্তু তোমাদের কাছে তার অর্থ ব্যাখ্যা করা কঠিন, কারণ তোমরা তা বুঝতে চেষ্টা করো না৷ 12 এতদিনে তোমাদের শিক্ষক হওয়া উচিত ছিল; কিন্তু এটা বোধ হয় প্রযোজনীয় য়ে তোমাদের ঈশ্বরের বাণীর প্রাথমিক বিষয়গুলি কেউ শেখায়৷ কোন শক্ত খাবার নয়, তোমাদের প্রযোজন দুধের৷ 13 যার দুধের প্রযোজন সে তো শিশু৷ সেই ব্যক্তির ধার্মিকতার বিষয়ে য়ে শিক্ষা আছে সে সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা নেই৷ 14 কিন্তু শক্ত খাবার তাদেরই জন্য যাঁরা শিশুর মতো আচরণ করে না এবং আত্মায় পরিপক্ক৷ নিজেদের শিক্ষা দিয়ে ও তা অভ্য়াস করে তারা ভাল মন্দের বিচার করতে শিখেছে৷
1 এই জন্য খ্রীষ্টের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা আমাদের শেষ করে ফেলা উচিত৷ যা নিয়ে আমরা শুরু করেছিলাম পুনরায় সেই পুরানো শিক্ষামালার দিকে আর আমাদের ফিরে যাওয়া ঠিক নয়৷ মন্দ বিষয় থেকে সরে আসা, ঈশ্বরে বিশ্বাস করা এইসব করে আমরা খ্রীষ্টেতে জীবন শুরু করেছিলাম৷ 2 সেই সময় বিভিন্ন রকম বাপ্তিস্ম ও হস্তার্পণের বিষয়ে আমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল৷ মৃতদের পুনরুত্থানের বিষয়ে শিক্ষা ও অনন্ত বিচার সম্বন্ধেও শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু এখন আমাদের আরো এগিয়ে যাওয়া ও উন্নত শিক্ষা গ্রহণ করা দরকার৷ 3 ঈশ্বর যদি চান তবে আমরা এই কাজ করব৷ 4 যাঁরা একবার অন্তরে সত্যের আলো পেয়েছে, স্বর্গীয় দানের আস্বাদ পেয়েছে ও পবিত্র আত্মার অংশীদার হয়েছে আর ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে য়ে মঙ্গল নিহিত আছে তার অভিজ্ঞতা লাভ করেছে ও ঈশ্বরের নতুন জগতের পরাক্রমের কথা জানতে পেরেছে অথচ তারপর খ্রীষ্ট থেকে দূরে সরে গেছে, এমন লোকেদের মন পরিবর্তন করে খ্রীষ্টের পথে তাদের ফিরিয়ে আনা আর সন্ভব নয়৷ কারণ তারা ঈশ্বরের পুত্রকে অগ্রাহ্য় করে তাঁকে আবার ক্রুশে দিচ্ছে ও সকলের সামনে তাঁকে উপহাসের পাত্র করছে৷ 5 6 7 য়ে জমি বারবার বৃষ্টি শুষে নেয় ও যাঁরা তা চাষ করে তাদের জন্য ভাল ফসল উত্পন্ন করে, সে জমি য়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদে ধন্য তা বোঝা যায়৷ 8 কিন্তু যদি সেই জমি শেয়ালকাঁটা ও কাঁটাঝোপে ভরে যায় তবে তা অর্কম্মন্য জমি, তার ঈশ্বরের অভিশাপে অভিশপ্ত হবার ভয় আছে এবং তা আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে৷ 9 আমার প্রিয় বন্ধুরা, যদিও আমরা এরূপ বলছি, তবু তোমাদের সম্বন্ধে আমরা এখন দৃঢ় নিশ্চয় য়ে, তোমাদের অবস্থা এর থেকে ভালো হবে আর তোমরা যা কিছু করবে তা তোমাদের পরিত্রাণ লাভেরই পদক্ষেপ বিশেষ৷ 10 ঈশ্বর ন্যায় বিচারক, তোমাদের সব সত্ কর্মের কথা ঈশ্বর মনে রাখেন৷ তাঁর লোকদের তোমরা য়ে সাহায্য করেছ ও এখনও করে থাক, এর দ্বারা তোমরা ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের ভালবাসাই প্রকাশ করেছ, এও কি তিনি ভুলতে পারেন? 11 কিন্তু আমরা চাই য়েন তোমাদের প্রত্যেকে তাদের সমস্ত জীবনে একই রকম তত্পরতা দেখায়, যাতে তোমরা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত হতে পার য়ে তোমাদের প্রত্যাশা পূর্ণ হবে৷ 12 আমরা চাই না য়ে তোমরা অলস হও; কিন্তু আমরা চাই যাঁরা বিশ্বাস ও ধৈর্য্যের দ্বারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি লাভ করে, তোমরাও তাদের মতো হও৷ 13 ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আর ঈশ্বর থেকে মহান কেউ নেই৷ তাই তাঁর থেকে মহান কোন ব্যক্তির নামে শপথ করতে না পারাতে তিনি নিজের নামে শপথ করলেন৷ 14 তিনি বললেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাকে আশীর্বাদ করব ও তোমার বংশ অগনিত করব৷’ 15 এই প্রতিশ্রুতির বিষয়ে অব্রাহাম ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করলেন, পরে ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি লাভ করলেন৷ 16 সাধারণ মানুষ যখন তার থেকে মহান কোন ব্যক্তির নাম নিয়ে শপথ করে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করবে কিনা সে বিষয়ে এই শপথের দ্বারা সব সংশয়ের অবসান হয়, সব তর্কের নিষ্পত্তি হয়ে যায়৷ 17 ঈশ্বর য়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই প্রতিজ্ঞার উত্তরাধিকারীদের তিনি শপথের মাধ্যমে আরও নিশ্চয়তার সঙ্গে বলতে চাইলেন য়ে তাঁর সেই প্রতিজ্ঞা অপরিবর্ত্তনীয়৷ 18 ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি ও শপথ কখনও বদলায় না৷ ঈশ্বর মিথ্যা কথা বলেন না ও শপথ করার সময়ে ছল করেন না৷ অতএব আমরা যাঁরা নিরাপত্তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে ছুটে যাই, তাদের পক্ষে এই বিষয়গুলি বড় সান্ত্বনার৷ ঐ বিষয় দুটি ঈশ্বরের প্রদত্ত আশাতে জীবন অতিবাহিত করার জন্য আমাদের সান্ত্বনা ও শক্তি য়োগাবে৷ 19 আমাদের জীবন সম্পর্কে আমাদের য়ে প্রত্যাশা আছে তা নোঙরের মত দৃঢ় ও অটল৷ তা পর্দার আড়ালে স্বর্গীয় মন্দিরের পবিত্র স্থানে আমাদের প্রবেশ করায়৷ 20 যীশু, যিনি মল্কীষেদকের রীতি অনুযাযী চিরকালের জন্য মহাযাজক হলেন, তিনি আমাদের হয়ে সেখানে প্রবেশ করেছেন এবং আমাদের জন্য পথ খুলে দিয়েছেন৷
1 এই মল্কীষেদক শালেমের রাজা ও পরাত্পর ঈশ্বরেরযাজক ছিলেন৷ অব্রাহাম যখন রাজাদের পরাস্ত করে ঘরে ফিরছিলেন তখন এই মল্কীষেদক অব্রাহামের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ 2 অব্রাহাম যুদ্ধ জয় করে যা কিছু পেয়েছিলেন তার দশ ভাগের একভাগ তাঁকে দিয়েছিলেন৷ মল্কীষেদকের নামের অর্থ হল, ‘ন্যায়ের রাজা,’ এরপর তিনি আবার ‘শালেমের রাজা’ অর্থাত্ ‘শান্তিরাজ৷’ 3 মল্কীষেদকের মা, বাবা, বা তার পূর্বপুরুষের কোন বংশতালিক পাওয়া যায় না, তার শুরু বা শেষের কোন নথি নেই৷ ঈশ্বরের পুত্রের মতো তিনি হলেন অনন্তকালীন যাজক৷ 4 তাহলে তোমরা দেখলে, মল্কীষেদক কতো মহান ছিলেন৷ এমন কি আমাদের কুলপিতা অব্রাহাম যুদ্ধ জয় করে লুঠ করা দ্রব্যের দশ ভাগের এক ভাগ তাঁকে দিয়েছিলেন৷ 5 লেবির সন্তানদের মধ্যে যাঁরা যাজক হন তাঁরা তাঁদের ভাই ইস্রায়েলের সন্তানদের কাছ থেকে বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে এক দশমাংশ গ্রহণ করার অধিকার লাভ করেন, যদিও তাঁরা উভয়েই অব্রাহামের বংশধর৷ 6 মল্কীষেদক লেবির বংশের ছিলেন না, কিন্তু তিনি অব্রাহামের কাছ থেকে দশমাংশ নিয়েছিলেন; আর ঈশ্বর যাকে আশীর্বাদ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন সেই অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ 7 এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই য়ে ক্ষুদ্রতর ব্যক্তিই সব সময় মহত্তর ব্যক্তির কাছ থেকে আশীর্বাদ লাভ করে৷ 8 ইহুদী যাজকরা মরণশীল হয়েও এক দশমাংশ পেয়েছিলেন৷ কিন্তু মল্কীষেদক যিনি অব্রাহামের কাছ থেকে এক দশমাংশ পেয়েছিলেন তিনি জীবিত, শাস্ত্র এই কথা বলে৷ 9 আবার এও বলা য়েতে পারে য়ে লেবি নিজেও অব্রাহামের মধ্য দিয়ে মল্কীষেদককে দশমাংশ দিয়েছেন৷ 10 মল্কীষেদক যখন অব্রাহামের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন তখন লেবি তাঁর পিতৃকুলপতির (অব্রাহামের) দেহে অবস্থান করছিলেন৷ 11 যাঁরা যাজকের কাজ করতেন সেই লেবির বংশধরদের কাজের উপর ভিত্তি করে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের তাঁর বিধি-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন৷ সেই যাজকের মাধ্যমে যখন লোকেরা আত্মিকভাবে সিদ্ধি লাভ করতে পারে নি তখন অন্য এক যাজকের আসার প্রযোজন হল৷ অন্য একজন যাজক যিনি হারোণের মতো নন কিন্তু মল্কীষেদকের মতো৷ 12 যখন যাজকত্ব বদলানো হয় তখন বিধি-ব্যবস্থারও পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে পড়ে৷ 13 আমরা এসব কথা খ্রীষ্টের বিষয়ে বলছি৷ তিনি তো অন্য বংশভুক্ত৷ সেই বংশের কেউ তো যাজকরূপে যজ্ঞবেদীর পরিচর্য়া কখনও করেন নি৷ 14 কারণ এটা সুস্পষ্ট য়ে আমাদের প্রভু যিহূদা বংশ থেকেই এসেছেন; আর এই বংশের ব্যাপারে মোশি যাজক হওয়ার বিষয়ে কিছুই বলেন নি৷ 15 এই বিষয়গুলি আরও সুস্পষ্ট হয়ে যায় যখন আমরা মল্কীষেদকের মতো আর একজন যাজককে মূর্ত্তমান হতে দেখি৷ 16 তিনি মানুষের রীতি-নীতি এবং বিধি-ব্যবস্থা অনুযাযী যাজক হন নি, কিন্তু তিনি অবিনশ্বর জীবনী শক্তির অধিকারী হয়েই তা হয়েছিলেন৷ 17 কারণ তাঁর বিষয়ে শাস্ত্রে একথা বলা হয়েছে: ‘মল্কীষেদকের মতো তুমি অনন্তকালীন যাজক৷’ 18 পুরানো বিধান বাতিল করা হল, কারণ তা দুর্বল ও অকেজো হয়ে পড়েছিল৷ 19 কারণ মোশির বিধি-ব্যবস্থা কিছুই সিদ্ধ করতে পারে নি৷ এখন আমাদের কাছে মহত্তর আশা রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হতে পারি৷ 20 আরো উল্লেখয়োগ্য বিষয় এই, য়ে ঈশ্বর যখন যীশুকে মহাযাজক করেন তখন ঈশ্বর শপথ করেছিলেন, অন্যরা যাজক হবার সময় ঈশ্বর কোন শপথ করেন নি, 21 কিন্তু তিনি যীশুকে যাজক করার সময় শপথ করলেন৷ ঈশ্বর বললেন:‘প্রভু এক শপথ করলেন, আর তিনি এ বিষয়ে তাঁর মন বদলাবেন না, ‘তুমি অনন্তকালীন যাজক৷’’ গীতসংহিতা 110:4 22 এই শপথের কারণে যীশু ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের উত্কৃষ্টতর এক চুক্তির জামিনদার হয়েছেন৷ 23 অনেকে যাজক হয়েছিলেন, কারণ মৃত্যু কোনও একজন যাজককে অনন্তকালের জন্য থাকতে দেয় নি৷ 24 কিন্তু ইনি (যীশু) চিরজীবি বলে তাঁর এই যাজকত্ব চিরস্থাযী৷ 25 তাই যাঁরা খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে আসে তাদের তিনি চিরকাল উদ্ধার করতে পারেন, কারণ তাদের জন্য তাঁর কাছে আবেদন করতে তিনি চিরকাল জীবিত আছেন৷ 26 প্রকৃতপক্ষে আমাদের যীশুর মতো এইরকম পবিত্র, নির্দোষ ও নিষ্কলঙ্ক মহাযাজক প্রযোজন ছিল৷ তিনি পাপীদের থেকে স্বতন্ত্র, আর আকাশ মণ্ডলের উর্দ্ধেও তাঁকে উন্নীত করা হয়েছে৷ 27 তিনি অন্যান্য যাজকদের মতো নন৷ অন্যান্য যাজকদের মতো প্রতিদিন আগে নিজের পাপের জন্য ও পরে লোকদের পাপের জন্য বলি উত্সর্গ করার তাঁর কোন প্রযোজন নেই, কারণ তিনি যখন নিজেকে বলিরূপে একবার উত্সর্গ করেন তখনই তিনি সেই কাজ চিরকালের জন্য সম্পন্ন করেছেন৷ 28 বিধি-ব্যবস্থানুসারে য়ে সব মহাযাজক নিযোগ করা হয় তারা দুর্বল মানুষ; কিন্তু পরে ঈশ্বরের শপথ বাক্যের দ্বারা, য়াঁকে মহাযাজকরূপে নিযোগ করা হয়, তিনি ঈশ্বরের পুত্র, যিনি চির সিদ্ধ৷
1 এখন আমরা য়ে বিষয় বলছি, তার প্রধান বক্তব্য হচ্ছে: আমাদের এক মহাযাজক আছেন, যিনি স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমাময় সিংহাসনের ডানপাশে বসে আছেন৷ 2 তিনি সেই মহাপবিত্রস্থানে সেবা করছেন, যা প্রকৃত উপাসনার স্থান এবং য়ে উপাসনাস্থল মানুষের হাতে গড়া নয় বরং ঈশ্বর স্বয়ং তা নির্মাণ করেছেন৷ 3 প্রত্যেক মহাযাজককে বলি ও উপহার উত্সর্গ করার জন্যই নিযোগ করা হয়৷ তাই আমাদের এই মহাযাজককেও ঈশ্বরকে কিছু উত্সর্গ করতে হয়৷ 4 আমাদের মহাযাজক যদি পৃথিবীতে থাকতেন তবে তিনি কখনও যাজক হতেন না, কারণ পুরানো বিধি-ব্যবস্থা অনুযাযী এখানে যাজকরা ঈশ্বরকে উপহার নিবেদন করার জন্য রয়েছেন৷ 5 যাজকরা য়ে কাজ করেন তা কেবল স্বর্গীয় জিনিসগুলির নকল ছায়ামাত্র৷ মোশি যখন পবিত্র তাঁবু স্থাপন করতে যাচ্ছিলেন, তখন ঈশ্বর তাঁকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘দেখো, পাহাড়ের ওপরে তোমাকে য়েমন শিবির দেখানো হয়েছিল তুমি ঠিক সেইরকমই করো৷’ 6 কিন্তু এখন যীশুকে য়ে কাজের জন্য নিযোগ করা হয়েছে তা ঐ যাজকদের থেকে অনেক গুণে মহত্৷ সেই একইভাবে যীশু য়ে নতুন চুক্তি ঈশ্বরের কাছ থেকে এনেছেন তা পুরাতন চুক্তিটির থেকে অনেক শ্রেষ্ঠ৷ এই নতুন চুক্তি শ্রেষ্ঠ বিষয়ের প্রতিশ্রুতির ওপর স্থাপিত হয়েছে৷ 7 কারণ ঐ প্রথম চুক্তি যদি নিখুঁত হতো, তাহলে তার জায়গায় দ্বিতীয় চুক্তি স্থাপনের প্রযোজন হতো না৷ 8 কিন্তু ঈশ্বর লোকদের মধ্যে ত্রুটি লক্ষ্য করে বলেছিলেন:‘দেখো, এমন সময় আসছে, যখন আমি ইস্রায়েলের লোকেদের ও যিহূদার লোকেদের সঙ্গে এক নতুন চুক্তি করব৷ 9 সেই চুক্তি অনুসারে নয় যা আমি তাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে এর আগে করেছিলাম, য়েদিন আমি তাদের হাত ধরে মিশর দেশ থেকে বাইরে বের করে নিয়ে এসেছিলাম৷ আমার সঙ্গে তাদের য়ে চুক্তি হয়েছিল তাতে তাদের বিশ্বাস ছিল না; আর তাই আমি তাদের কাছ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলাম, একথা প্রভু বলেন৷ 10 আমি ইস্রায়েল বংশের সঙ্গে এক নতুন চুক্তি স্থির করব; ভবিষ্যতে আমি এই চুক্তি স্থাপন করব, একথা প্রভু বলেন৷ আমি তাদের মনের মাঝে আমার বিধি-ব্যবস্থা দেবো আর তাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা লিখে দেবো৷ আমি তাদের ঈশ্বর হবো ও তারা আমার প্রজা হবে৷ 11 কাউকে আর তাদের সহ নাগরিকদের ও ভাইদের এই বলে শিক্ষা দেবার দরকার হবে না, প্রভুকে জানো, কারণ ছোট থেকে বড় পর্যন্ত সবাই আমাকে জানবে৷ 12 কারণ আমার বিরুদ্ধে তারা যতো অপরাধ করেছে সে সব আমি ক্ষমা করব, তাদের সকল পাপ আর কখনও স্মরণ করব না৷’ যিরমিয় 31:31-34 13 এই চুক্তিকে যখন ঈশ্বর নতুন বলছেন তখন প্রথমের চুক্তিটি পুরানো হয়ে যাচ্ছে৷ যা কিছু পুরানো তা তো জীর্ণ আর তা শিগ্গিরই বিলীন হয়ে যাবে৷
1 ঐ প্রথম চুক্তিতে উপাসনা করার নানা বিধিনিয়ম ছিল; আর মানুষের তৈরী এক উপাসনার স্থান ছিল৷ 2 উপাসনার স্থানটি ছিল এক তাঁবুর ভেতরে৷ যার প্রথম অংশকে বলা হতো পবিত্র স্থান, য়েখানে ছিল বাতিদান,টেবিল ও ঈশ্বরকে উত্সর্গীকৃত বিশেষ রুটি৷ 3 দ্বিতীয় পর্দার পেছনে আর একটি অংশ ছিল যাকে মহাপবিত্রস্থান বলা হত৷ 4 এই অংশে ছিল ধূপ জ্বালাবার জন্য সোনার বেদী ও চুক্তির সেই সিন্দুক, যার চারপাশ ছিল সোনার পাতে মোড়া৷ এর মধ্যে ছিল সোনার এক ঘটিতে মান্না ও হারোণের ছড়ি, য়ে ছড়ি মুকুলিত হয়েছিল; আর পাথরের সেই দুই ফলক যার ওপর নিয়ম চুক্তির শর্ত লেখা ছিল৷ 5 সেই সিন্দুকের ওপর ছিল সোনার দুই করূব স্বর্গদূতযা ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশ করত৷ তার দয়ার আসনটির ওপর ছায়া ফেলে থাকত৷ বর্তমানে আমরা এর খুঁটিনাটি বর্ণনা দিতে পারি না৷ 6 যখন এইসব জিনিস পূর্বে বর্ণিত ব্যবস্থা অনুসারে প্রস্তুত হল, তখন যাজকরা প্রতিদিন উপাসনা করার জন্য প্রথম কক্ষে প্রবেশ করতেন৷ 7 কিন্তু মহাযাজক দ্বিতীয় কক্ষে কেবল একা বছরে একবার প্রবেশ করতেন; তিনি আবার রক্ত না নিয়ে প্রবেশ করতেন না৷ সেই রক্ত তিনি নিজের জন্য ও লোকদের দোষ-ত্রুটি ও অনিচ্ছাকৃত পাপের মার্জনার জন্য উত্সর্গ করতেন৷ 8 পবিত্র আত্মা এর দ্বারা আমাদের জানাচ্ছেন য়ে, যতদিন পর্যন্ত প্রথম তাঁবু ছিল, ততদিন মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশের পথ খুলে দেওয়া হয় নি৷ 9 এটা আজকের জন্য একটা দৃষ্টান্তস্বরূপ৷ সেই দৃষ্টান্ত মতে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত ঐসব বলি ও উপহার উপাসনাকারীকে সম্পূর্ণভাবে শুদ্ধ করতে পারত না এবং উপাসনাকারীর হৃদয়কে সিদ্ধিলাভ করাতো না৷ 10 ঐ উপহারগুলি কেবল খাদ্য়, পানীয় ও নানা প্রকার বাহ্যিক শুচি স্নানের গণ্ডীতে বাঁধা ছিল৷ সে সব বিধি-ব্যবস্থাগুলি ছিল কেবল মানুষের দেহ সম্বন্ধীয়৷ সেগুলি ব্যক্তির হৃদয় সম্বন্ধীয় বিষয় ছিল না৷ নতুন আদেশ না আসা পর্যন্ত ঈশ্বর তাঁর লোকদের এইসব নিয়ম অনুসরণ করতে দিয়েছিলেন৷ 11 কিন্তু এখন মহাযাজকরূপে খ্রীষ্ট এসেছেন৷ আমরা এখন য়ে সব উত্তম বিষয় পেয়েছি, তিনি সেসবের মহাযাজক৷ পূর্বে যাজকরা তাঁবুর মতো কোন স্থানে সেবা করতেন, কিন্তু খ্রীষ্ট তেমনি করেন না৷ সেই তাঁবু থেকেও এক উত্তমস্থানে খ্রীষ্ট মহাযাজকরূপে সেবা করতেন৷ সেই স্থান সিদ্ধ, সেই স্থান মানুষের হাতে গড়া নয়, তা এই জগতের নয়৷ 12 খ্রীষ্ট একবার চিরতরে সেই মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছেন৷ তিনি মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশের জন্য ছাগ বা বাছুরের রক্ত ব্যবহার করেন নি, কিন্তু তিনি একবার চিরতরে নিজের রক্ত নিয়ে মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছিলেন৷ খ্রীষ্ট সেখানে প্রবেশ করে আমাদের জন্য অনন্ত মুক্তি অর্জন করেছেন৷ 13 ছাগ বা বৃষের রক্ত ও বাছুরের ভস্ম সেই সব অশুচি মানুষের উপর ছিটিয়ে তাদের দেহকে পবিত্র করা হত, যাঁরা উপাসনা স্থলে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট শুচি ছিল না৷ 14 তবে এটা কি ঠিক নয় য়ে খ্রীষ্টের রক্ত আরও কত অধিক কার্য়করী হতে পারে? অনন্তজীবি আত্মার মাধ্যমে খ্রীষ্ট ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিজেকে বলিদান করলেন পরিপূর্ণ উত্সর্গরূপে৷ তাই খ্রীষ্টের রক্ত আমাদের সমস্ত হৃদয়কে পাপ থেকে শুদ্ধ ও পবিত্র করবে, যাতে আমরা জীবন্ত ঈশ্বরের উপাসনা করতে পারি৷ 15 তাই খ্রীষ্ট তাঁর লোকদের জন্য ঈশ্বরের কাছে এক নতুন চুক্তি উপস্থিত করেছেন৷ খ্রীষ্ট এই নতুন চুক্তি এনেছেন য়েন ঈশ্বরের আহুত লোকেরা তাঁর প্রতিশ্রুত সব আশীর্বাদ পেতে পারে৷ ঈশ্বরের লোকরা সেই আশীর্বাদ অনন্তকাল ভোগ করবে৷ তারা সেসবের অধিকারী হবে কারণ প্রথম চুক্তির সময়ে তারা য়ে পাপ করেছে সেই পাপ থেকে তাদের উদ্ধার করতে খ্রীষ্ট মৃত্যুবরণ করলেন৷ 16 মানুষ মৃত্যুর পূর্বে একটা নিয়ম পত্রকরে যায়; কিন্তু নিয়মকারী যদি জীবিত থাকে তবে সেই নিয়মপত্র বা চুক্তির কোন অর্থই হয় না৷ 17 কারণ নিয়মকারীর মৃত্যু হলে তবেই নিয়ম পত্র বলবত্ হয়৷ 18 এইজন্য ঐ প্রথম চুক্তি যা ঈশ্বর ও তাঁর লোকদের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল সেখানেও ঐ কথা প্রয়োজ্য৷ সেই চুক্তি বলবত্ করতে রক্তের প্রযোজন ছিল৷ 19 কারণ লোকদের কাছে মোশি বিধি-ব্যবস্থা থেকে সমস্ত আজ্ঞা পাঠ করে পরে তিনি জল ও রক্তবর্ণ মেষলোম আর একগোছা এসোবের ঘাস ব্যবহার করে গোবত্স ও ছাগদের রক্ত সেই পুস্তকটিতে ও লোকদের গায়ে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন৷ 20 মোশি বলেছিলেন, ‘এই সেই রক্ত যা কার্য়কারী করছে সেই চুক্তি যার আজ্ঞাবহ হতে ঈশ্বর তোমাদের বলছেন৷’ 21 আর সেইভাবে মোশি পবিত্র তাঁবু ও উপাসনা সংক্রান্ত সব জিনিসের ওপর রক্ত ছিটিয়ে দিয়েছিলেন৷ 22 কারণ বিধি-ব্যবস্থা বলে য়ে প্রায় সব কিছুই রক্ত ছিটিয়ে শুচি করা প্রযোজন, আর রক্তপাত ব্যতিরেকে পাপের মোচন হয় না৷ 23 এই বিষয়গুলি ছিল আসল স্বর্গীয় বিষয়গুলির দৃষ্টান্ত, সেগুলিকে বলিদানের রক্তে শুচি করার প্রযোজন ছিল৷ কিন্তু যা প্রকৃত স্বর্গীয় বিষয় সেগুলি এর থেকে শ্রেষ্ঠতর বলিদানের দ্বারা শুচি হওয়া প্রযোজন৷ 24 খ্রীষ্ট স্বর্গে মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করেছেন৷ মানুষের তৈরী কোন মহাপবিত্র স্থানে খ্রীষ্ট প্রবেশ করেন নি৷ পৃথিবীর তাঁবুর মহাপবিত্র স্থানে স্বর্গীয় স্থানের প্রতিচ্ছবি মাত্র; কিন্তু খ্রীষ্ট স্বর্গে প্রবেশ করেছেন, আর এখন আমাদের হয়ে তিনি ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন৷ 25 মহাযাজক বছরে একবার বলির য়ে রক্ত নিয়ে মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করেন তা তার নিজের নয়৷ কিন্তু খ্রীষ্ট স্বর্গে প্রবেশ করেছেন মহাযাজকদের উত্সর্গের মতো বারবার নিজেকে উত্সর্গ করার জন্য নয়৷ 26 খ্রীষ্ট যদি তাই করতেন তবে জগত্ সৃষ্টির সময় থেকে তাঁকে বারবার প্রাণ দিতে হত৷ খ্রীষ্ট এসে একবার নিজেকে উত্সর্গ করেছেন৷ সেই একবারই চিরন্তন কাজের সমাপ্তি হয়েছে৷ জগতের অন্তিম কালেই খ্রীষ্ট নিজেকে বলিরূপে উত্সর্গ করে লোকদের পাপনাশ করতে এলেন৷ 27 মানুষের জন্য একবার মৃত্যু এবং মৃত্যুর পর তাঁর বিচার হয়৷ 28 বহুলোকের পাপের বোঝা তুলে নেবার জন্য খ্রীষ্ট একবার নিজেকে উত্সর্গ করলেন; তিনি দ্বিতীয়বার দর্শন দেবেন, তখন পাপের বোঝা তুলে নেবার জন্য নয়, কিন্তু যাঁরা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে তাদের পরিত্রাণ দিতে তিনি আসবেন৷
1 ভবিষ্যতে য়ে সকল উত্কৃষ্ট বিষয় আসবে, বিধি-ব্যবস্থা হচ্ছে তারই অস্পষ্ট ছায়া মাত্র৷ বিধি-ব্যবস্থা ঐসব বিষয়ের বাস্তবরূপ নয়৷ তাই যাঁরা ঈশ্বরের উপাসনা করতে আসে, বছর বছর তারা একই রকম বলিদান বারবার করে, কিন্তু বিধি-ব্যবস্থা সেই লোকদের সিদ্ধি দিতে পারে না৷ 2 বিধি-ব্যবস্থা যদি পারত, তবে ঐ বলিদান কি শেষ হত না? কারণ যাঁরা উপাসনা করে তারা যদি একবার শুচি হয় তবে তাদের পাপের জন্য নিজেকে আর দোষী ভাববার প্রযোজন নেই৷ কিন্তু বিধি-ব্যবস্থা তা করতে সক্ষম নয়৷ 3 ঐসব লোকের বলিদান বছর বছর তাদের পাপের ক্ষমা স্মরণ করিয়ে দেয়, 4 কারণ বৃষের কি ছাগের রক্ত পাপ দূর করতে পারে না৷ 5 সেইজন্যই খ্রীষ্ট এ জগতে আসার সময় বলেছিলেন:‘তুমি বলিদান ও নৈবেদ্য চাও নি, কিন্তু আমার জন্য এক দেহ প্রস্তুত করেছ৷ 6 তুমি হোমে ও পাপার্থক বলিদান উত্সর্গে প্রীত নও৷ 7 এরপর তিনি বললেন, ‘এই আমি! শাস্ত্রে আমার বিষয়ে য়েমন লেখা আছে, হে ঈশ্বর দেখ, আমি তোমার ইচ্ছা পূর্ণ করতেই এসেছি৷’গীতসংহিতা 40:6-8 8 প্রথমে তিনি বললেন, ‘বলিদান, নৈবেদ্য, হোমবলি ও পাপার্থক বলি তুমি চাও নি; আর তাতে তুমি প্রীত হও নি৷’ যদিও সেইসব বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে উত্সর্গ করা হয়৷ 9 এরপর তিনি বললেন, ‘দেখো, আমি তোমার ইচ্ছা পালন করবার জন্যই এসেছি৷’ তিনি দ্বিতীয়টি প্রবর্তন করার জন্য প্রথমটিকে বাতিল করতে এসেছেন৷ 10 ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারেই তিনি এই কাজ সমাপ্ত করেছেন৷ এইজন্যই খ্রীষ্ট তাঁর দেহ একবারেই চিরকালের জন্য উত্সর্গ করেছেন যাতে আমরা চিরকালের জন্য পবিত্র হই৷ 11 প্রত্যেক যাজক প্রত্যেকদিন দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের সেবা করেন তাঁরা বারবার সেই একই বলি উত্সর্গ করেন৷ কিন্তু তাদের বলিদান কখনও পাপ দূর করতে পারে না৷ 12 খ্রীষ্ট পাপের জন্য একটি বলিদান উত্সর্গ করলেন যা সকল সময়ের জন্য যথেষ্ট৷ তারপর তিনি ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে বসলেন৷ 13 তাঁর শত্রুদের মাথা তাঁর পায়ের নীচে অবনত না হওয়া পর্যন্ত এখন তিনি সেখানে অপেক্ষা করছেন৷ 14 তিনি একটি বলিদান উত্সর্গ করে চিরকালের জন্য তাঁর লোকেদের নিখুঁত করেছেন৷ তারাই সেই লোক যাদের পবিত্র করা হয়েছে৷ 15 পবিত্র আত্মাও আমাদের কাছে এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন৷ প্রথমে তিনি বলেন: 16 ‘ঐ সময়ের পর প্রভু বলেছেন, আমি তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করব৷ আমি তাদের হৃদয়ে আমার নিয়মগুলো গেঁথে দেব, আর তাদের মনে আমি তা লিখে দেব৷’যিরমিয় 31:33 17 এরপর তিনি বলেন: ‘আমি তাদের সব পাপ ও অধর্ম আর কখনও মনে রাখবো না৷’ যিরমিয় 31:34 18 তাই একবার যখন সেইসব পাপ ক্ষমা করা হল, তখন পাপের জন্য বলিদান উত্সর্গ করার আর কোন প্রযোজন নেই৷ 19 তাই আমার ভাই ও বোনেরা, মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আমাদের আছে৷ যীশুর রক্তের গুণে আমরা নির্ভীকতার সঙ্গে সেখানে প্রবেশ করতে পারি৷ 20 খ্রীষ্ট এই নতুন পথ একটি পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাত্ তাঁর দেহের মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য খুলে দিয়েছেন৷ এ এক জীবন্ত পথ৷ এই নতুন পথে আমরা পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাত্ খ্রীষ্টের দেহের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে পারি৷ 21 তাই আমাদের এক মহান যাজক রয়েছেন যিনি ঈশ্বরের গৃহের ওপর কর্তৃত্ত্ব করেন৷ 22 আমাদের শুচি করা হয়েছে ও দোষী বিবেকের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে৷ আমাদের দেহকে শুচিশুদ্ধ জলে ধৌত করা হয়েছে৷ তাই এস, আমরা শুদ্ধ হৃদয়ে বিশ্বাসের কৃত নিশ্চয়তায় ঈশ্বরের সামনে হাজির হই৷ 23 তাই এস, আমরা আমাদের প্রত্যাশাকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে থাকি এবং অপরের কাছে তাকে জানাতে ব্যর্থ না হই৷ আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে পারি য়ে, তিনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তিনি পূরণ করবেন৷ 24 আমাদের উচিত একে অপরের বিষয়ে চিন্তা করা, য়েন ভালবাসতে ও সত্ কাজ করতে পরস্পরকে উত্সাহ দান করতে পারি৷ 25 আমরা য়েন একত্র সমবেত হওয়ার অভ্যাস ত্যাগ না করি, য়েমন কেউ কেউ সেইরকম করছে৷ কিন্তু এস, আমরা পরস্পরকে উত্সাহ ও চেতনা দিই৷ তোমরা যতই সেই দিন এগিয়ে আসতে দেখছ, ততই এ বিষয়ে আরো বেশী করে উদ্যোগী হও৷ 26 সত্যের জ্ঞানলাভের পর যদি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে চলি, তবে সেই পাপের জন্য বলিদান উত্সর্গ করার মতো আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না৷ 27 আমরা যদি পাপ করেই চলি তবে বিচারের জন্য সেই ভয়ঙ্কর প্রতীক্ষা আর প্রচণ্ড ক্রোধাগ্নি সমস্ত ঈশ্বর বিরোধীকে গ্রাস করবে৷ 28 কেউ যদি মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করতো তবে দুজন কিংবা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে নিষ্ঠুরভাবে তাকে হত্যা করা হত, তাকে ক্ষমা করা হত না৷ 29 ভেবে দেখো, য়ে লোক ঈশ্বরের পুত্রকে ঘৃণা করেছে, চুক্তির য়ে রক্তের মাধ্যমে সে শুচি হয়েছিল তা তুচ্ছ করেছে, আর যিনি অনুগ্রহ করেন সেই অনুগ্রহের আত্মাকে অপমান করেছে - হ্যাঁ, নতুন চুক্তির রক্তকে য়ে অবমাননা করেছে সেই ব্যক্তির কতোই না ঘোরতর শাস্তি হওয়া উচিত৷ 30 আমরা জানি, ঈশ্বর বলেন, ‘যাঁরা মন্দ কাজ করে, তাদের আমি শাস্তি দেব; তাদের প্রতিফল দেব৷’ঈশ্বর আবার বলেছেন, ‘প্রভু তাঁর লোকদের বিচার করবেন৷’ 31 জীবন্ত ঈশ্বরের হাতে গড়া পাপী মানুষের পক্ষে কি ভয়ঙ্কর বিষয়৷ 32 সেই আগের দিনগুলির কথা মনে করে দেখ, প্রথমে যখন তোমরা সত্য গ্রহণ করলে, তখন তোমাদের অনেক কষ্ট ও দুঃখভোগ করতে হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা বেশ অটল ছিলে৷ 33 কখনও কখনও লোকেরা প্রকাশ্যে তোমাদের বিদ্রূপ করেছে ও অনেক লোকের সামনে তোমাদের নির্যাতিত হতে হয়েছে৷ কখনও অন্যের ওপর তোমাদের মতো নির্য়াতিত হচ্ছে দেখে তোমরা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছ৷ 34 যাঁরা কারাগারে বন্দী ছিল, তোমরা তাদের সাহায্য করেছ ও তাদের দুঃখভোগের অংশ নিয়েছ৷ তোমাদের সম্পত্তি লুঠ করে নিলেও তোমরা আনন্দ করেছ, কারণ তোমরা জানতে য়ে এসব থেকে উত্কৃষ্ট ও চিরস্থাযী এক সম্পদ তোমাদের জন্য আছে৷ 35 তাই অতীতে তোমাদের য়ে সাহস ছিল তা হারিও না, কারণ সেই সাহস তোমাদের জন্য মহাপুরস্কার নিয়ে আসবে৷ 36 তোমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে, ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার পর তোমরা তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ফল লাভ করবে৷ 37 কারণ এখন থেকে অল্প সময়ের মধ্যে,‘য়াঁর আসবার কথা আছে তিনি আসবেন, তিনি দেরী করবেন না৷ 38 আমার দৃষ্টিতে যাদের ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছি তারা বিশ্বাসের ফলেই বেঁচে থাকবে, কিন্তু সে যদি ভয়ে বিশ্বাস থেকে সরে যায় তবে আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট হব না৷’হববকূক 2:3-4 39 কিন্তু আমরা এমন লোক নই যাঁরা বিশ্বাস থেকে সরে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যায়, বরং আমরা সেই রকম লোক যাঁরা বিশ্বাসে রক্ষা পায়৷
1 বিশ্বাসের অর্থ হল আমরা যা প্রত্যাশা করি তা য়ে আমরা পাবই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার ও বাস্তবে যা কিছু আমরা চোখে দেখতে পাই না তার অস্তিত্ব সম্বন্ধে প্রমাণ পাওয়া৷ 2 অতীতে ঈশ্বরের লোকেরা তাঁদের বিশ্বাসের দরুণই সুখ্যাতি লাভ করেছিলেন৷ 3 বিশ্বাসে আমরা বুঝতে পারি য়ে বিশ্ব ভুমণ্ডল ঈশ্বরের মুখের কথাতেই সৃষ্ট হয়েছিল, তাই চোখে যা দেখা যায় সেই দৃশ্য কোন কিছু প্রত্যক্ষ বস্তু থেকে উত্পন্ন হয় নি৷ 4 কযিন ও হেবল উভয়েই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান উত্সর্গ করেছিলেন; কিন্তু হেবল উত্তম বলে ঈশ্বরের কাছে গ্রাহ্য় হয়েছিলেন কারণ হেবলের বলিদান বিশ্বাসযুক্ত ছিল৷ ঈশ্বর বলেছিলেন য়ে হেবল যা উপহার দিয়েছিল তাতে তিনি প্রীত হয়েছিলেন৷ ঈশ্বর হেবলকে একজন ধার্মিক লোক বললেন, কারণ তার বিশ্বাস ছিল৷ যদিও হেবল মৃত; কিন্তু তাঁর বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তিনি এখনও কথা বলছেন৷ 5 হনোককে পৃথিবী থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, তিনি মরেন নি৷ এই পৃথিবী থেকে হনোককে তুলে নেবার পূর্বে হনোক এই সাক্ষী রেখে যান য়ে তিনি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করেছিলেন৷ পরে লোকেরা হনোকের খোঁজ আর পেলেন না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে কাছে রাখার জন্য নিজেই হনোককে তুলে নিয়েছিলেন৷ হনোকের জীবনে বিশ্বাস ছিল বলেই এমনটি সন্ভব হয়েছিল৷ 6 বিনা বিশ্বাসে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যায় না, য়ে কেউ ঈশ্বরের কাছে আসে তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে য়ে ঈশ্বর আছেন; আর যাঁরা তাঁর অন্বেষণ করে, তাদের তিনি পুরস্কার দিয়ে থাকেন৷ 7 বিশ্বাসেই নোহ, যা যা কখনও দেখা যায় নি এমন সব বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হলে তিনি তা গুরুত্ব সহকারে নিলেন এবং নোহ তাঁর পরিবারের রক্ষার জন্য এক জাহাজ নির্মাণ করলেন৷ এর দ্বারা তিনি (অবিশ্বাসী) জগতকে দোষী প্রতিপন্ন করলেন, আর বিশ্বাসের মাধ্যমে য়ে ধার্মিকতা লাভ হয় তার অধিকারী হলেন৷ 8 ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল বলেই ঈশ্বর যখন অব্রাহামকে আহ্বান করলেন, তিনি তাঁর বাধ্য হলেন, আর তাঁকে য়ে দেশ দেবেন বলে ঈশ্বর বলেছিলেন তা অধিকার করতে চললেন৷ তিনি কোথায় চলেছেন তা না জানলেও তিনি রওনা দিলেন৷ 9 তাঁর বিশ্বাসের বলেই তিনি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত সেই দেশে আগন্তুকের মতো জীবনযাপন করলেন৷ তাঁর বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি তা করতে পেরেছিলেন৷ সেই প্রতিশ্রুত দেশে ইসহাক ও যাকোবের সাথে তিনি তাঁবুতে বাস করেছিলেন, যাঁরা তাঁর মতোই (একই প্রতিশ্রুতির) উত্তরাধিকারী ছিলেন৷ 10 কারণ অব্রাহাম সেই দৃঢ় ভিত্তিযুক্ত নগরের প্রতীক্ষায় ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর যার স্থপতি ও নির্মাতা৷ 11 অব্রাহাম বযোবৃদ্ধ হয়েছিলেন তাই তাঁর সন্তান হওয়ার সন্ভব ছিল না৷ তাঁর স্ত্রী সারা বন্ধ্যা ছিলেন৷ কিন্তু ঈশ্বরের ওপর অব্রাহামের বিশ্বাস ছিল, তাই ঈশ্বর শক্তি দিলেন য়েন তাঁদের সন্তানলাভ হয়৷ ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা য়ে তিনি পূর্ণ করতে পারেন এ বিশ্বাস অব্রাহামের ছিল৷ তিনি প্রায় মৃতকল্প ছিলেন; কিন্তু এই একটি লোকের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছিল আকাশের তারার মতো অজস্র বংশধর৷ 12 সেই এক ব্যক্তি থেকে সমুদ্র সৈকতে বালুকণার মতো অগনিত বংশধররা এলো৷ 13 এইসব মহান ব্যক্তিরা বিশ্বাস নিয়েই মারা গেলেন৷ ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা কেউই বাস্তবে তা পান নি, কিন্তু দূর থেকে তা দেখেছিলেন ও তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন৷ তাঁরা খোলাখুলি স্বীকার করেছিলেন য়ে এই পৃথিবীতে তাঁরা প্রবাসী ও বিদেশী৷ 14 কারণ য়ে সব লোক এরকম কথা বলেন, তাঁরা য়ে নিজের দেশে ফেরার আশায় আছেন তা স্পষ্ট করেই ব্যক্ত করেন৷ 15 য়ে দেশ থেকে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন, সেই দেশের কথা যদি মনে রাখতেন, তবে ইচ্ছা করলে সেখানে ফিরে য়েতে পারতেন৷ 16 কিন্তু এখন তাঁরা তার থেকে আরো ভাল দেশে, সেই স্বর্গীয় দেশে, যাবার আকাঙ্খা করছিলেন৷ এইজন্য ঈশ্বর নিজেকে তাঁদের ঈশ্বর বলে পরিচয় দিতে লজ্জা পান না, কারণ তিনি তাঁদের জন্য এক নগর প্রস্তুত করেছেন৷ 17 ঈশ্বর যখন অব্রাহামের বিশ্বাসের পরীক্ষা করছিলেন, অব্রাহাম তার কিছু পূর্বেই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি পান তবু তিনি তাঁর পুত্র ইসহাককে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করতে নিয়ে গিয়েছিলেন৷ অব্রাহাম ঈশ্বরের নির্দেশ পালন করেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ ঈশ্বর অব্রাহামকে পূর্বেই বলে রেখেছিলেন, ‘ইসহাকের মাধ্যমেই তোমার বংশধররা দেখা দেবে৷’ 18 19 অব্রাহাম বিশ্বাস করলেন য়ে ঈশ্বর মৃত্যুর মধ্য হতেও মানুষকে উত্থাপন করতে সমর্থ৷ বাস্তবে তাই হল, ঈশ্বর অব্রাহামকে তাঁর পুত্রকে বলি দেওয়া থেকে বিরত করলেন ফলে অব্রাহাম ইসহাককে য়েন মৃত্যুর মধ্য থেকেই ফিরে পেলেন৷ 20 সেই বিশ্বাসের বলেই ইসহাক ভবিষ্যতের বিষয় চিন্তা করে এষৌ ও যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ 21 যাকোব বৃদ্ধ বয়সে মারা যাবার সময় বিশ্বাসের শক্তিতে য়োষেফের ছেলেদের প্রত্যেককে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ তিনি লাঠির উপর ভর দিয়ে উঠে ঈশ্বরের উপাসনা করেছিলেন৷ যাকোবের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি এই সব করেছিলেন৷ 22 বিশ্বাসের বলেই য়োষেফ মৃত্যুশয়্য়ায় বলেছিলেন য়ে, ইস্রায়েলীয়রা মিশর দেশ ছেড়ে একদিন চলে যাবে৷ তাই তিনি তাঁর দেহাবশেষ নিয়ে কি করতে হবে তার নির্দেশ দিতে পেরেছিলেন৷ য়োষেফের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি ঐ কথা বলে গিয়েছিলেন৷ 23 মোশির জন্মের পর তাঁর মা-বাবা তিনমাস পর্যন্ত তাকে লুকিয়ে রেখেছিলেন৷ তাঁদের বিশ্বাস ছিল বলেই তাঁরা তা করেছিলেন৷ তাঁরা দেখলেন মোশি খুব সুন্দর এক শিশু, আর তাঁরা রাজার আদেশ অমান্য করতে ভয় পেলেন না৷ 24 মোশি বড় হয়ে উঠলেন ও পূর্ণ বয়স্ক মানুষে পরিণত হলেন৷ মোশি ফরৌণের মেয়ের পুত্র বলে পরিচিত হতে চাইলেন না৷ মোশি পাপের সুখভোগ করতে চাইলেন না, কারণ সে সব সুখভোগ ছিল ক্ষণিকের৷ 25 কিন্তু মোশি ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে দুঃখভোগ করাকেই বেছে নিলেন৷ মোশি তা করতে পেরেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ 26 মিশরের সমস্ত ঐশ্বর্য অপেক্ষা খ্রীষ্টের জন্য বিদ্রূপ সহ্য করাকেই শ্রেয় মনে করলেন৷ ঈশ্বরের কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় মোশি তা করতে পেরেছিলেন৷ 27 মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি মিশর ত্যাগ করলেন৷ তিনি রাজার ক্রোধকে ভয় করলেন না৷ মোশি সুস্থির থাকলেন কারণ তিনি সেই ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি রাখলেন য়াঁকে কেউ দেখতে পায় না৷ 28 মোশি নিস্তারপর্ব পালন করে গৃহের দরজায় রক্ত লেপে দিলেন৷ দরজায় এইভাবে রক্ত লেপন করা হল য়েন সংহারকর্তা ইস্রায়েলীয়দের প্রথম পুত্র সন্তানদের স্পর্শ করতে না পারে৷ মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি এসব করতে পেরেছিলেন৷ 29 য়ে লোকদের মোশি নিয়ে চলেছিলেন তারা শুকনো জমির ওপর দিয়ে যাওয়ার মতো লোহিত সাগর হেঁটে পার হয়ে গেল৷ তাদের বিশ্বাস ছিল বলেই তারা তা করতে পেরেছিল৷ মিশরীয়রাও লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে হেঁটে য়েতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা সবাই মারা পড়ল৷ 30 ঈশ্বরের লোকদের বিশ্বাসের জন্যই যিরীহোর প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ল৷ লোকেরা প্রাচীরের চারপাশে সাতদিন ধরে ঘুরলো আর তার পরেই সেই প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ল৷ 31 বিশ্বাসে বেশ্য়া রাহব, ইস্রায়েলীয় গুপ্তচরদের সাদরে গ্রহণ করে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করায় নগর ধ্বংস হবার সময় ঈশ্বরের অবাধ্য লোকদের সঙ্গে সে বিনষ্ট হল না৷ 32 তোমাদের কাছে কি আমি আরো দৃষ্টান্ত তুলে ধরব? আমার যথেষ্ট সময় নেই য়ে আমি তোমাদের কাছে গিদিযোন, বারক, শিম্শোন, যিপ্তহ, দাযূদ, শমূয়েল ও ভাববাদীদের সব কথা বলি; ওঁদের প্রচণ্ড বিশ্বাস ছিল৷ 33 তাঁরা বিশ্বাসের দ্বারা রাজ্যসকল জয় করেছিলেন৷ তাঁরা যা ন্যায় তাই করলেন এবং ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিগুলি পেলেন৷ তাঁরা সিংহদের মুখ বন্ধ করেছিলেন৷ 34 কেউ কেউ আগুনের তেজ নিস্প্রভ করলেন, তরবারির আঘাতে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেলেন৷ এঁদের বিশ্বাস ছিল তাই এঁরা এসব করতে পেরেছিলেন৷ বিশ্বাসের বলেই দুর্বল লোকেরা বলশালী লোকে রূপান্তরিত হয়েছিলেন; তাঁরা যুদ্ধের সময় মহাবিক্রমী হয়ে শত্রু সৈন্যদের পরাস্ত করেছিলেন৷ 35 কোন কোন লোক মৃতদের মধ্য থেকে পুনর্জীবিত হলেন আর পরিবারের নারীরা তাঁদের স্বামীদের ফিরে পেলেন৷ আবার অনেকে ভয়ঙ্কর পীড়ন সহ্য করলেন তবু তার থেকে নিষ্কৃতি চাইলেন না৷ তাঁরা বিশ্বাসে এসব সহ্য করলেন য়েন মহত্তর পুনরুত্থানের ভাগী হন৷ 36 কেউ কেউ বিদ্রূপ ও চাবুকের মার সহ্য করলেন, আবার অনেকে বেড়ি বাঁধা অবস্থায় কারাবাস করলেন৷ 37 কেউ বা মরলেন পাথরের আঘাতে, কাউকে বা করাত দিয়ে দুখণ্ড করা হল, কাউকে তরবারির আঘাতে মেরে ফেলা হল৷ কেউ কেউ নিঃস্ব অবস্থায় মেষ ও ছাগের চামড়া পরে ঘুরে বেড়াতেন, নির্যাতিত হতেন এবং খারাপ ব্যবহার পেতেন৷ 38 জগতটা এই ধরণের লোকের য়োগ্য ছিল না৷ এঁরা গুহায় ও মাটির গর্তে আশ্রয় নিয়ে মরুভূমি ও পর্বতে ঘুরে বেড়াতেন৷ 39 বিশ্বাসের জন্য এঁদের সুখ্যাতি করা হল, কিন্তু তাঁরা কেউ ঈশ্বরের সেই মহান প্রতিশ্রুতি পান নি৷ 40 ঈশ্বর আমাদের জন্য মহত্তর কিছু করতে চেয়েছিলেন, যাতে তাঁরা আমাদের সাথে মিলিত হয়ে পরিপূর্ণ হতে পারেন৷
1 আমাদের চারপাশে ঈশ্বর বিশ্বাসী ঐসব মানুষরা রয়েছেন৷ তাদের জীবন ব্যক্ত করছে বিশ্বাসের প্রকৃতরূপ, তাই আমাদের উচিত তাদের অনুসরণ করা৷ আমাদেরও উচিত সেই দৌড়ে য়োগ দেওয়া যা আমাদের জন্য নির্দিষ্ট আছে, কখনই থেমে যাওয়া উচিত নয়৷ জীবনে যা বাধার সৃষ্টি করতে পারে এমন সব কিছু আমরা য়েন দূরে ফেলে দিই৷ য়ে পাপ সহজে জড়িয়ে ধরে তা য়েন দূরে ঠেলে দিই৷ 2 আমাদের সর্বদাই যীশুর আদর্শ অনুযাযী চলা উচিত৷ বিশ্বাসের পথে যীশুই আমাদের নেতা; তিনি আমাদের বিশ্বাসকে পূর্ণতা দেন৷ তিনি ক্রুশের উপর মৃত্যুভোগ করলেন; ক্রুশের মৃত্যুর অপমান তুচ্ছ জ্ঞান করে তা সহ্য করলেন৷ তাঁর সম্মুখে ঈশ্বর য়ে আনন্দ রেখেছিলেন সেই দিকে দৃষ্টি রেখেই যীশু তা করতে পেরেছিলেন৷ এখন তিনি ঈশ্বরের সিংহাসনের ডানপাশে বসে আছেন৷ 3 যীশুর কথা ভাবো, যখন পাপীরা তাঁর বিরোধিতা করে অনেক নিন্দা মন্দ করেছিল, তখন তিনি এই সমস্ত বিরোধিতা সহ্য করেছিলেন৷ যীশু তা করেছিলেন যাতে তোমরাও তাঁর মতো সহিষ্ণু হও এবং চেষ্টা করা থেকে বিরত না হও৷ 4 পাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তোমরা এখনও মৃত্যুর মুখোমুখি হও নি৷ তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তিনি তোমাদের সান্ত্বনার কথা বলেন৷ 5 তোমরা সন্ভবতঃ সেই উত্সাহব্যঞ্জক কথা ভুলে গেছ৷ তিনি বলেছেন:‘হে আমার পুত্র, প্রভু যখন তোমায় শাসন করেন, মনে করো না য়ে তার কোন মূল্য নেই৷ তিনি যখন তোমায় সংশোধন করেন তখন নিরুত্সাহ হযো না৷ 6 কারণ প্রভু যাকে ভালবাসেন তাকেই শাসন করেন, সমস্ত পুত্রই পিতা কর্ত্তৃক শাসিত হয়৷’হিতোপদেশ 3:11-12 7 এখন যা কিছু কষ্ট পাচ্ছ তা পিতার কাছ থেকে শাসন বলে মেনে নাও৷ পিতা য়েমন তাঁর সন্তানকে শাসন করেন, তেমনি করেই ঈশ্বর তোমাদের জীবনে এইসব আসতে দিয়েছেন৷ সব সন্তানই পিতার অনুশাসনের অধীন৷ 8 তোমরা যদি কখনই শাসিত না হও (পুত্র মাত্রেই শাসিত হয়) তবে তোমরা তো তাঁর প্রকৃত সন্তান নও, যথার্থ পুত্র নও৷ 9 এই পৃথিবীতে আমাদের সবার পিতাই আমাদের মার্জিত ও সংশোধিত করেন এবং আমরা তাঁদের সম্মান করি৷ যিনি আমাদের আত্মিক পিতা তাঁর অনুশাসনের কাছে আমাদের সত্যিকারের জীবনের জন্য আমরা কি আরো বেশী মাথা নোয়াবো না? 10 পৃথিবীতে আমাদের পিতারা অল্প সময়ের জন্য শাস্তি দেন৷ কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করার জন্য শাস্তি দেন য়েন আমরা তাঁর মত পবিত্র হই৷ 11 কোনও ধরণের শাসনই শাসনের মুহূর্তে আমাদের আনন্দ দেয় না, বরং আমরা তাতে দুঃখ পাই; কিন্তু এটা যাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে, পরে তাদের জীবনে ধার্মিকতা ও শান্তি রাজত্ব করে৷ 12 তাই তোমাদের শিথিল হাত দুটোকে শক্ত করো, অবশ হাঁটু দুটোকে সবল করে তোল৷ 13 তোমাদের চলার পথ সরল কর, খোঁড়া পা য়েন গাঁট থেকে খুলে না যায়, বরং তা য়েন সুস্থ হয়৷ 14 সবার সঙ্গে শান্তিতে জীবনযাপন করতে চেষ্টা কর, কারণ এই ধরণের জীবন ছাড়া কেউ প্রভুর দর্শন লাভ করে না৷ 15 দেখো, কেউ য়েন ঈশ্বরের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত না হও৷ দেখো তোমাদের মধ্যে য়েন তিক্ততার শেকড় না গজিয়ে ওঠে৷ তোমাদের মধ্যে এমন লোক থাকলে গোটা দলকে কলুষিত করতে পারে৷ 16 সাবধান, কেউ য়েন য়ৌন পাপে না পড়ে অথবা এষৌর মতো ঈশ্বর ভক্তি জলাঞ্জলি না দেয়৷ এষৌ ছিল জ্যেষ্ঠ পুত্র, সে তার পিতার সমস্ত কিছুর উত্তরাধিকারী ছিল; কিন্তু এক বেলার খাবারের জন্য সে নিজের জন্মাধিকার বিকিয়ে দিয়েছিল৷ 17 তোমরা তো জানো, পরে সে বাবার আশীর্বাদ পাওয়ার চেষ্টা করেও বিফল হল৷ তাঁর বাবা তাকে সেই আশীর্বাদ দিতে অস্বীকার করলেন, কারণ এষৌ তার ভুল শোধরাবার কোন পথ খুঁজে পেল না৷ 18 তোমরা এক নতুন স্থানে এসেছ; ইস্রায়েলীয়রা য়েমন এক পাহাড়ের সামনে এসেছিল এ স্থান তেমন নয়৷ তোমরা সেই পাহাড়ের কাছে আসো নি যা স্পর্শ করা য়েত না, যা আগুনে জ্বলছিলো, তোমরা এমন স্থানে আসোনি যা কিনা অন্ধকারময়, বিষাদময়, ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ৷ 19 তারা য়েমন শুনেছিল তেমন তূরীধ্বনি অথবা সেই কন্ঠস্বর তোমরা শুনতে পাচ্ছ না, যা শুনে তারা মিনতি করেছিল য়েন আর কোন বাক্য তাদের কখনও শোনানো না হয়৷ 20 কারণ য়ে আদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল তা তারা সহ্য করতে পারল না৷ তাদের বলা হল, ‘যদি কোন কিছু, এমন কি কোন পশু পর্যন্ত পর্বত স্পর্শ করে, তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে হবে৷’ 21 সেই দৃশ্য এমন ভয়ঙ্কর ছিল য়ে মোশি বললেন, ‘আমি অত্যন্ত ভয় পেয়েছি আর কাঁপছি৷’ 22 কিন্তু তোমরা সেরকম কোন স্থানে আসো নি৷ য়ে নতুন স্থানে তোমরা এসেছ তা হল সিযোন পর্বত৷ তোমরা জীবন্ত ঈশ্বরের নগরী স্বর্গীয় জেরুশালেমে এসেছ৷ তোমরা সেই জায়গায় এসেছ য়েখানে হাজার হাজার স্বর্গদূতরা পরমানন্দে একত্রিত হয়৷ 23 তোমরা এসেছ ঈশ্বরের প্রথম জাতদের সভাস্থলে, যাদের নাম স্বর্গে লিখিত রয়েছে৷ যিনি সকলের বিচারকর্তা সেই ঈশ্বরের কাছে এসেছ৷ সিদ্ধিপ্রাপ্ত আত্মার সমাবেশে এসেছ৷ 24 তোমরা যীশুর কাছে এসেছ যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে তাঁর লোকদের জন্য নতুন চুক্তি এনেছেন৷ সেই ছেটানো রক্তের কাছে এসেছ যা হেবলের রক্ত থেকে উত্তম কথা বলে৷ 25 সাবধান, ঈশ্বর যখন কথা বলেন তা শুনতে অসম্মত হযো না৷ তিনি পৃথিবীতে যখন সতর্কবাণী উচ্চারণ করলেন যাঁরা তাঁর কথা শুনতে অসম্মত হল তারা রক্ষা পেল না৷ এখন ঈশ্বর স্বর্গ থেকে বলছেন, তাঁর কথা না শুনলে তোমাদের অবস্থা ঐ লোকদের থেকেও ভয়াবহ হবে একথা সুনিশ্চিত জেনো৷ 26 সেই সময় তাঁর কথায় পৃথিবী কেঁপে উঠেছিল৷ কিন্তু এখন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, ‘আমি আর একবার পৃথিবীকে কাঁপিয়ে তুলব৷ এমনকি স্বর্গকেও কাঁপিয়ে তুলব৷’ 27 ‘আর একবার’ এর অর্থ হল সমস্ত সৃষ্ট বস্তু যাদের নাড়ানো যায় তাদের তিনি দূর করে দেবেন, সুতরাং যা কিছু অনড় তা হবে চিরস্থাযী৷ 28 আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত কারণ আমরা একটা জগতকে পেয়েছি যাকে নাড়ানো যায় না৷ আমরা কৃতজ্ঞ চিত্তে ঈশ্বরের উপাসনা করব যাতে তিনি প্রীত হন৷ আমরা তাঁর উপাসনা করবো শ্রদ্ধা ও ভীতির সঙ্গে৷ 29 কারণ আমাদের ঈশ্বর সর্বগ্রাসী অগ্নিস্বরূপ৷
1 তোমরা পরস্পরকে সাথী খ্রীষ্টীয়ান হিসেবে ভালবেসে য়েও৷ 2 অতিথি সেবা করতে ভুলো না৷ অতিথি সেবা করতে গিয়ে কেউ কেউ না জেনে স্বর্গদূতদের আতিথ্য করেছেন৷ 3 যাঁরা বন্দী অবস্থায় কারাগারে আছেন তাঁদের সঙ্গে তোমরা নিজেরাও য়েন বন্দী এ কথা মনে করে তাঁদের কথা ভুলো না৷ যাঁরা যন্ত্রণা পাচ্ছে তাদের ভুলো না; মনে রেখো তোমরাও তাদের সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রণা পাচ্ছো৷ 4 বিবাহ বন্ধনকে তোমরা সবাই অবশ্য মর্য়াদা দেবে, যাতে দুটি মানুষের মধ্যে পবিত্র সম্পর্ক রক্ষিত হয়, কারণ যাঁরা ব্যভিচারী ও লম্পট, ঈশ্বর তাদের বিচার করবেন৷ 5 তোমাদের আচার ব্যবহার ধনাসক্তিবিহীন হোক৷ তোমাদের যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাক কারণ তিনি বলেছেন,‘আমি তোমাকে কখনও ত্যাগ করবো না; আমি কখনও তোমাকে ছাড়বো না৷’দ্বিতীয় বিবরণ 31:6 6 তাই আমরা সাহসের সঙ্গে বলতে পারি,‘প্রভুই আমার সহায়; আমি ভয় করবো না; মানুষ আমার কি করতে পারে৷’গীতসংহিতা 118:6 7 তোমাদের নেতাদের কথা স্মরণ কর, যাঁরা তোমাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী প্রচার করে গেছেন৷ তাঁদের জীবনের আদর্শ ও উত্তম বিষয়গুলির চিন্তা কর, ও তাঁদের য়ে বিশ্বাস ছিল তার অনুসারী হও৷ 8 যীশু খ্রীষ্ট কাল, আজ আর চিরকাল একই আছেন৷ 9 নানাপ্রকার অদ্ভুত সব শিক্ষার দ্বারা বিপথে চলে য়েও না৷ হৃদয়কে ঈশ্বরের অনুগ্রহে শক্তিমান করো তবে খাওয়ার নিয়মকানুন পালনের দ্বারা নয় কারণ যাঁরা খাদ্য়াভ্যাসের খুঁটিনাটি মেনে চলেছে তার কোনও সুফলই তারা পায় নি৷ 10 আমাদের এক নৈবেদ্য আছে৷ য়ে যাজকরা পবিত্র তাঁবুতে উপাসনা করেন তাঁদের সেই নৈবেদ্য ভোজন করার কোন অধিকার নেই৷ 11 মহাযাজক পশুদের রক্ত নিয়ে মন্দিরের মহাপবিত্রস্থানে য়েতেন পাপের বলি হিসেবে; কিন্তু পশুদের দেহগুলি শিবিরের বাইরে পুড়িয়ে ফেলা হত৷ 12 ঠিক সেই মতোই যীশু নগরের বাইরে দুঃখভোগ করলেন৷ যীশু বলি হলেন য়েন তাঁর নিজের রক্তে তাঁর লোকদের পবিত্র করতে পারেন৷ 13 তাই আমাদেরও ঐ শিবিরের বাইরে যীশুর কাছে যাওয়া উচিত৷ যীশু য়েমন লজ্জা, অপমান সহ্য করেছিলেন, আমাদের উচিত্ সেই লজ্জা, অপমান বহন করা, 14 কারণ এখানে আমাদের এমন কোন নগর নেই যা চিরস্থাযী; কিন্তু য়ে নগর ভবিষ্যতে আসছে আমরা তারই প্রত্যাশায় রয়েছি৷ 15 তাই যীশুর মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে স্তবস্তুতি উতসর্গ করতে য়েন বিরত না হই৷ সেই বলিদান হল স্তব স্তুতি, যা আমরা তাঁর নাম স্বীকারকারী ওষ্ঠাধরে করে থাকি৷ 16 অপরের উপকার করতে ভুলো না৷ যা তোমার নিজের আছে তা অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ভুলো না, কারণ এই ধরণের বলিদান উত্সর্গে ঈশ্বর প্রীত হন৷ 17 তোমাদের নেতাদের আদেশ মেনে চলো, তাঁদের কর্তৃত্ত্বের অধীন হও, কারণ তোমাদের আত্মাকে নিরাপদে রাখার জন্য তাঁরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন৷ তাঁদের কথা মেনে চলো কারণ তাঁদের এব্যাপারে হিসেব নিকেশ করতে হবে, যাতে তাঁরা আনন্দে এই কাজ করতে পারেন, যন্ত্রণা ও দুঃখ নিয়ে নয়৷ তাঁদের কাজকে কঠিন করে তুললে তোমাদের লাভ হবে না৷ 18 আমাদের জন্য প্রার্থনা করো৷ আমরা নিশ্চয় করে বলতে পারি য়ে, আমাদের শুদ্ধ বিবেক আছে; আর জীবনে যা কিছু করি তা শ্রেষ্ঠ উদ্দেশ্য নিয়ে করি৷ 19 আমি তোমাদের বিশেষভাবে এই প্রার্থনা করতে বলছি য়ে, আমি য়েন শিগ্গির তোমাদের কাছে ফিরে য়েতে পারি৷ এটাই আমি অন্য সব কিছু থেকে বেশী করে চাইছি৷ 20 শান্তির ঈশ্বর যিনি মৃতদের মধ্য থেকে আমাদের প্রভু যীশুকে ফিরিয়ে এনেছেন, রক্তের মাধ্যমে শাশ্বত চুক্তি অনুযাযী যিনি মহান মেষপালক, প্রার্থনা করি সেই ঈশ্বর য়েন তোমাদের প্রযোজনীয় সব উত্তম বিষয়গুলি দেন যাতে তোমরা তাঁর ইচ্ছা পালন করতে পার৷ আমি নিবেদন করি য়েন যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই তিনি তা সাধন করেন৷ যুগে যুগে যীশুর মহিমা অক্ষয় হোক৷ 21 22 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এই চিঠিতে আমি সংক্ষেপে য়ে উত্সাহজনক কথা তুলে ধরলাম তা ধৈর্য্য ধরে শুনবে৷ 23 তোমাদের জানাচ্ছি আমাদের ভাই তীমথিয় জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন৷ তিনি যদি শিগ্গির আসেন তবে আমি তাঁকে নিয়ে তোমাদের সঙ্গে দেখা করতে যাব৷ 24 তোমাদের নেতাদের ও ঈশ্বরের সকল লোককে আমাদের শুভেচ্ছা জানিও৷ যাঁরা ইতালী থেকে এখানে এসেছেন তাঁরা সকলে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 25 ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক৷
1 আমি যাকোব, ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দাস, নানা দেশে ছড়িয়ে থাকা ঈশ্বরের বারো গোষ্ঠীর লোকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি৷ 2 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন নানারকম প্রলোভনের মধ্যে পড়, তখন তা মহা আনন্দের বিষয় বলে মনে কর৷ 3 একথা জেনো, এই সকল বিষয় তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা করে ও তোমাদের ধৈর্য্যগুণ বাড়িয়ে দেয়৷ 4 সেই ধৈর্য্যগুণকে তোমাদের জীবনে পুরোপুরিভাবে কাজ করতে দাও৷ এর ফলে তোমরা নিখুঁত ও সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে এবং কোন বিষয়ে তোমাদের কোন অভাব থাকবে না৷ 5 তোমাদের কারোর যদি প্রজ্ঞার অভাব হয়, তবে সে তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুক৷ ঈশ্বর দয়াবান; তিনি সকলকে উদারভাবে এবং আনন্দের সঙ্গে দেন৷ অতএব ঈশ্বর তোমাদের প্রজ্ঞা প্রদান করবেন৷ 6 কিন্তু ঈশ্বরের কাছে চাইতে হলে কোনরকম সন্দেহ না রেখে সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গেই তা চাইতে হবে, কারণ য়ে সন্দেহ করে, সে ঝোড়ো হাওয়ায় আলোড়িত উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গের মতো৷ 7 এই প্রকার লোক দুই মনের মানুষ, প্রত্যেকটি কাজেই চঞ্চল ও অস্থির৷ এমন লোকের মনে করা উচিত নয় য়ে প্রভুর কাছে সে কিছু পাবে৷ 8 9 য়ে বিশ্বাসী ভাই গরীব, সে গর্ব অনুভব করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে আত্মিকভাবে উন্নত করেছেন৷ 10 য়ে বিশ্বাসী ভাই ধনী, সে গর্ব বোধ করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে দেখিয়েছেন য়ে সে আত্মিকভাবে দরিদ্র৷ ধনী ব্যক্তি একদিন বুনো ফুলের মতো ঝরে যাবে৷ 11 সূর্য় ওঠার পর তার তাপ ক্রমশঃ বেড়েই যায়, তাপে তৃণ ঝলসে যায় ও ফুল ঝরে যায়৷ ফুল সুন্দর হলেও তার রূপের বাহার বিলীন হয়ে যায়, তেমনি ঘটে ধনী ব্যক্তির জীবনে৷ তার কাজের পরিকল্পনাকালেই সে হঠাত্ মৃত্যুমুখে পড়ে৷ 12 পরীক্ষার সময়ে য়ে ধৈর্য্য ধরে ও স্থির থাকে সে ধন্য, কারণ বিশ্বাসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ঈশ্বর তাকে পুরস্কার স্বরূপ অনন্ত জীবন দেবেন৷ ঈশ্বরকে যাঁরা ভালবাসে তাদের তিনি এই জীবন দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ 13 কেউ যখন প্রলুদ্ধ হয় তখন য়েন সে না বলে, ‘ঈশ্বর আমাকে প্রলুদ্ধ করেছেন৷’ মন্দ ঈশ্বরকে প্রলোভিত করতে পারে না এবং ঈশ্বরও নিজে কাউকে প্রলোভনে ফেলেন না৷ 14 প্রত্যেক মানুষ তার নিজের মন্দ অভিলাষের দ্বারা প্রলোভিত হয়৷ তার মন্দ ইচ্ছা তাকে পাপের দিকে টেনে নিয়ে যায় এবং ফাঁদে ফেলে৷ 15 এই মন্দ ইচ্ছা গর্ভবতী হয়ে পাপের জন্ম দেয় এবং পাপ পূর্ণতা লাভ করে মৃত্যুর জন্ম দেয়৷ 16 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এ ব্যাপারে তোমরা প্রতারিত হযো না৷ 17 সমস্ত ভাল ও নিখুঁত দান স্বর্গ থেকে আসে, কারণ পিতা ঈশ্বর যিনি স্বর্গীয় আলো সৃষ্টি করেছিলেন তিনি সর্বদা একই আছেন; তাঁর কোনও পরিবর্তন হয় না৷ 18 ঈশ্বর তাঁর নিজের ইচ্ছায় সত্যের বাক্য়ের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন দিয়েছেন৷ তিনি চান য়েন তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে আমরা অগ্রগন্য হই৷ 19 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা শ্রবণে সত্বর কিন্তু কথনে ধীর হও৷ চট করে রেগে য়েও না৷ 20 ক্রোধ কখনই ঈশ্বরের প্রত্যাশা অনুযাযী সত্ জীবন যাপনের সহায়ক হতে পারে না৷ 21 তাই তোমাদের জীবন থেকে সব রকমের অপবিত্রতা ও যা কিছু মন্দ যা তোমাদের চারপাশে রয়েছে তাকে দূরে সরিয়ে দাও; আর নম্রভাবে ঈশ্বরের শিক্ষা গ্রহণ কর যা তিনি তোমাদের হৃদয়ে বপন করেছেন৷ 22 ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে কাজ কর, শুনে কিছু না করে বসে থাকলে চলবে না৷ শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের শ্রোতা হয়ে নিজেকে ঠকিও না৷ 23 যদি কেউ শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্য়ের শ্রোতাই হয় আর সেই মতো কাজ না করে, তবে সে এমন একজন লোকের মতো য়ে আয়নার দিকে তাকায়, 24 নিজেকে দেখে এবং চলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে সে নিজে কেমন দেখতে তা ভুলে যায়৷ 25 কিন্তু সেই ব্যক্তি প্রকৃত সুখী য়ে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা, যা মানুষের কাছে মুক্তি নিয়ে আসে তা ভালভাবে অধ্যয়ন করতে থাকে ও তা পালন করে এবং যা শ্রবন করে তা ভুলে যায় না, এই বাধ্যতা তাকে সুখী করে তোলে৷ 26 যদি কোন ব্যক্তি নিজেকে ধার্মিক মনে করে, অথচ নিজের মুখ না সামলায় তবে, সে নিজেকে ঠকায়, তার ‘ধার্মিকতা’ মূল্যহীন৷ 27 য়ে ধার্মিকতা ঈশ্বর বিশুদ্ধ ও খাঁটি হিসেবে অনুমোদন করেন তা হল অনাথ ও বিধবাদের দুঃখ কষ্টে দেখাশোনা করা এবং নিজেকে পৃথিবীর মন্দ প্রভাব থেকে দূরে রাখা৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা আমাদের মহিমাময় প্রভু যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাসী, সুতরাং তোমরা পক্ষপাতিত্ব করো না৷ 2 মনে কর কোন ব্যক্তি হাতে সোনার আংটি ও পরনে দামী পোশাক পরে তোমাদের সভায় এল৷ সেই সময় একজন গরীব লোকও ময়লা পোশাক পরে সেখানে এল, 3 যদি তোমরা সেই দামী পোশাক পরা মানুষটির দিকে বিশেষ নজর দিয়ে বল, ‘এই ভাল চেয়ারে বসুন;’ কিন্তু সেই গবীর লোকটিকে বল, ‘তুমি ওখানে দাঁড়াও!’ কিংবা ‘তুমি আমার এই পায়ের কাছে মাটিতে বস!’ 4 তাহলে তোমরা কি করছ? এক ব্যক্তি থেকে আরেকজনকে কি বেশী সম্মানের পাত্র বলে বিচার করছ না? তোমরা কি মন্দ মাপকাঠিতে লোকের বিচার করছ না? 5 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা শোন, সংসারে যাঁরা গরীব, ঈশ্বর কি তাদের বিশ্বাসে ধনী হবার জন্য মনোনীত করেন নি? যাঁরা ঈশ্বরকে ভালবাসে তাদের য়ে রাজ্য দেবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেই রাজ্যের অধিকারী হবার জন্য এই গরীব লোকদের কি তিনি বেছে নেন নি? 6 কিন্তু তোমরা সেই গরীব লোকটিকে কোন সম্মান দিলে না৷ ধনীরাই কি তোমাদের দাবিয়ে রাখে না? তারাই কি তোমাদের আদালতে টেনে নিয়ে যায় না? 7 য়ে উত্তম নাম (যীশু) তোমাদের ওপর কীর্ত্তিত হয়েছে, তোমরা য়াঁর আপনজন, ধনীরাই কি সেই সম্মানিত নামের নিন্দা করে না? 8 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থার উর্দ্ধে একটি বিধি আছে৷ এই রাজকীয় ব্যবস্থাটি শাস্ত্রে রয়েছে: ‘তোমরা প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে৷’তোমরা যদি সেই বিধি-ব্যবস্থা পালন কর তবে ভালই করছ৷ 9 কিন্তু তোমরা যদি কারোর প্রতি পক্ষপাতিত্ব কর তবে তোমরা পাপ করছ; আর এই রাজকীয় ব্যবস্থা তোমাদের ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করবে৷ 10 কেউ যদি সমস্ত ব্যবস্থা পালন করে ও তার মধ্যে কেবল যদি একটি ব্যবস্থা পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে সে সমস্ত ব্যবস্থা লঙঘন করার দোষে দোষী সাব্যস্ত হয়৷ 11 ঈশ্বর বলেছেন, ‘ব্যভিচার করো না৷’আবার তিনিই বলেছেন, ‘নরহত্যা করো না৷’এবার তুমি যদি ব্যভিচার না করে নরহত্যা কর, তাহলেও তুমি একজন ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী৷ 12 য়ে ব্যবস্থা তোমাদের স্বাধীন করেছে তারই দ্বারা তোমাদের বিচার হবে, সুতরাং তোমরা য়ে কোন কাজ করার আগে ও কথা বলার পূর্বে এই সব স্মরণ কর৷ 13 তোমাদের উচিত অপরের প্রতি দয়া করা, য়ে কারও প্রতি দয়া করে নি, ঈশ্বরের কাছ থেকে সে বিচারের সময় দয়া পাবে না৷ কিন্তু য়ে দয়া করেছে সে বিচারের সময় নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারবে৷ 14 আমার ভাই ও বোনেরা, যদি কেউ বলে আমার বিশ্বাস আছে, অথচ সেই অনুসারে কোন কাজ না করে, তা হলে তার বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই৷ সেই বিশ্বাস কি তাকে রক্ষা করতে পারবে? কখনই না৷ 15 ধর, কোন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাই বা বোনের অন্ন বস্ত্রের অভাব আছে, 16 এই অবস্থায় তাকে কোন সাহায্য না করে তোমরা যদি মুখে বল, ‘ঈশ্বর তোমার সহায় হোন, খেয়ে পরে থাক৷’ কিন্তু তার উপকার করতে ঐ প্রযোজনীয় দ্রব্য না দাও তবে ঐসব কথার কি মূল্য আছে? 17 ঠিক সেইভাবে বিশ্বাস অনুযাযী যদি কোন কাজ না হয় তবে সে বিশ্বাস মৃত বলেই গন্য হয়৷ সেই বিশ্বাস শুধু বিশ্বাসই, তার বেশী কিছু নয়৷ 18 কিন্তু কেউ হয়তো বলবে, ‘তোমার বিশ্বাস আছে, আর আমার কাজ আছে৷ কাজ বাদ দিয়ে তোমার বিশ্বাস আমাকে দেখাও আর আমি আমার কাজের মধ্যে আমার বিশ্বাস তোমাকে দেখাব৷’ 19 তুমি কি বিশ্বাস কর য়ে এক ঈশ্বর রয়েছেন? এমনকি ভূতরাও তা বিশ্বাস করে ও ভয়ে কাঁপে৷ 20 ওহে মুর্খ মানুষ! কর্মবিহীন বিশ্বাস য়ে কোন কাজের নয়, তুমি কি চাও আমি তা প্রমাণ করি? 21 অব্রাহাম আমাদের পিতৃপুরুষ ছিলেন৷ যখন তিনি তাঁর পুত্র ইসহাককে যজ্ঞ বেদীর ওপর উত্সর্গ করেন, তখন তাঁর কাজের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে স্বীকৃতি পান৷ 22 কাজেই লক্ষ্য কর অব্রাহামের বিশ্বাস ও কর্ম একসাথে কাজ করেছিল এবং তাঁর বিশ্বাস কর্মের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছিল৷ 23 এইভাবে শাস্ত্রের সেই বাক্য পূর্ণ হল৷ য়েখানে বলা হয়েছে, ‘অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখলেন৷ ঈশ্বরের কাছে সেই বিশ্বাস গ্রহণয়োগ্য হল এবং সেই বিশ্বাস অব্রাহাম ঈশ্বরের কাছে নির্দোষ গণিত হলেন;’ আর তাঁকে ‘ঈশ্বরের বন্ধু’ বলা হল৷ 24 তাহলে তোমরা দেখলে য়ে মানুষ তার কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরের কাছে নির্দোষ বলে গণিত হয়, কেবলমাত্র তার বিশ্বাসের দ্বারা নয়৷ 25 আর একটি দৃষ্টান্ত হিসাবে রাহবের কথা বলা য়েতে পারে৷ বেশ্য়া রাহব কি তার কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরের চোখে নির্দোষ গণিত হয় নি? সে গুপ্তচরদের (ঈশ্বরের লোক) লুকিয়ে রেখে পরে তাদের অন্য পথ দিয়ে নিরাপদে চলে য়েতে সাহায্য করেছিল৷ 26 দেহের মধ্যে প্রাণ যখন থাকে না, তখন সেই দেহ য়েমন মৃত, তেমনি কর্মবিহীন বিশ্বাসও মৃত৷
1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে বেশী লোকের শিক্ষক হওয়ার জন্য চেষ্টা করার দরকার নেই, কারণ তোমরা জান য়ে আমরা শিক্ষক বলে অন্যদের থেকে আমাদের বিচার কঠোর হবে৷ 2 কারণ আমরা সকলেই নানাভাবে অন্যায় করে থাকি৷ যদি কেউ তার কথাবার্তায় অসংযত না হয়, তবে সে একজন খাঁটি লোক, সে সব বিষয়ে নিজের দেহকে সংযত রাখতে পারে৷ 3 ঘোড়াদের বশে রাখার জন্য, আমরা তাদের মুখে বলগা দিই এবং তার ফলে তাদের সমস্ত দেহকে আমরা আমাদের পছন্দমত য়ে কোনও দিকে পরিচালিত করতে পারি৷ 4 আবার জাহাজের কথা ভাব, তারা কত প্রকাণ্ড, প্রচণ্ড বাতাসের মধ্যে দিয়ে চলে, অথচ ছোট্ট একটা হালের সাহায্যে নাবিক সেটাকে য়েদিকে ইচ্ছা সেদিকে নিয়ে যায়৷ 5 তেমনি জিভও দেহের একটা ছোট অঙ্গ, তবু তা বড় বড় কথা বলে৷দেখ আগুনের একটা ছোট ফুলকি কেমন করে এক বিরাট বনকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়৷ 6 জিভও তেমনি আগুনের ফুলকির মতো৷ আমাদের দেহের অঙ্গগুলির মধ্যে জিভ হল অধর্মের এক জগত, কারণ জিভ থেকেই নানা মন্দ আমাদের সমস্ত দেহে ছড়িয়ে পড়ে৷ নরকের আগুনে জিভ জ্বলে উঠে গোটা জীবনকে প্রভাবিত করে৷ 7 মানুষ সব রকমের পশু-পাখী, সরীসৃপ ও সমুদ্রের প্রাণীকে দমন করে রাখতে পারে আর তাদের বশে রাখতে পারে; 8 কিন্তু কোন মানুষ জিভকে বশে রাখতে পারে না, এই জিভ সব সময়ই অস্থির, মন্দ ও মারাত্মক বিষে ভরা৷ 9 এই জিভ দিয়েই আমরা কখনও আমাদের প্রভু ও পিতার প্রশংসা করি, আবার কখনও বা ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট মানুষকে অভিশাপ দিই৷ 10 একই মুখ থেকে প্রশংসা ও অভিশাপ নির্গত হয়৷ ভাই ও বোনেরা, এমন হওযা উচিত নয়৷ 11 একই উত্স থেকে কি কখনও মিষ্টি ও তেতো দুরকম জল নিঃসৃত হয়? 12 আমার ভাই ও বোনেরা, দ্রাক্ষা লতায় কি ডুমুর ফল ধরে? তেমনি নোনা জলের উত্স থেকে কি মিষ্টি জল পাওয়া যায়? 13 তোমাদের মধ্যে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান কে? সে সত্ জীবনযাপন করে ও নম্রতার সাথে ভাল কাজ করে গর্বহীনভাবে তার বিজ্ঞতা প্রকাশ করুক৷ 14 তোমাদের মনে যদি তিক্ততা, ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা থাকে তাহলে তোমাদের জ্ঞানের বড়াই করো না; করলে তোমাদের গর্ব হবে আর এক মিথ্যা, যা সত্যকে ঢেকে রাখে৷ 15 এই ধরণের ‘জ্ঞান’ যা ঈশ্বর থেকে লাভ হয় না তা পার্থিব, আত্মিক নয়, তা দিয়াবলের কাছ থেকে আসে৷ 16 য়েখানে ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা রয়েছে সেখানেই বিশৃঙ্খলা ও সব রকমের নোংরামি থাকে৷ 17 কিন্তু য়ে জ্ঞান ঈশ্বর থেকে আসে তা প্রথমতঃ শুচিশুদ্ধ পরে শান্তিপ্রিয়, সুবিবেচক, বাধ্যতা, দয়া ও সত্ কাজে পূর্ণ, পক্ষপাত শূন্য ও আন্তরিক৷ 18 যাঁরা শান্তির জন্য শান্তির পথে কাজ করে চলে, তারা উত্তম জিনিস লাভ করে যা যথার্থ জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে আসে৷
1 তোমাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ কোথা থেকে আসে তা কি তোমরা জান? তোমাদের দেহের মধ্যে য়ে সব স্বার্থপর লালসা যুদ্ধ করছে, সেই সবের মধ্য থেকেই আসে৷ 2 তোমরা কিছু চাও কিন্তু তা পাও না, তখন খুন কর ও অপরকে হিংসা কর৷ কিন্তু তবুও তা পেতে পারো না, তাই তোমরা ঝগড়া কর, মারামারি কর৷ তোমরা যা চাও, তা পাও না, কারণ তোমরা ঈশ্বরের কাছে চাও না৷ 3 অথবা চাইলেও পাও না কারণ তোমরা অসত্ উদ্দেশ্য নিয়ে চাও৷ তোমরা কেবল নিজেদের ভোগ বিলাসে ব্যবহারের জন্য জিনিস চাও৷ 4 সুতরাং তোমরা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত নও৷ তোমাদের জানা উচিত য়ে জাগতিক বস্তুগুলিকে ভালবাসার অর্থ হল ঈশ্বরকে ঘৃণা করা৷ তাই য়ে কেউ জগতের বন্ধু হতে চায় সে ঈশ্বরের শত্রু হয়ে ওঠে৷ 5 তোমরা কি মনে কর য়ে শাস্ত্রের এইসব কথা অর্থহীন? শাস্ত্র বলে, ‘ঈশ্বর য়ে আত্মাকে আমাদের অন্তরে বাস করতে দিয়েছেন, তা চায় য়েন আমরা শুধু তাঁরই হই৷’ 6 কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহদান তার থেকেও বড় বিষয়৷ তাই শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘ঈশ্বর অহঙ্কারীদের প্রতিরোধ করেন, কিন্তু যাঁরা নম্র তিনি তাদের অনুগ্রহ প্রদান করেন৷’ 7 তাই তোমরা নিজেদের ঈশ্বরের কাছে সঁপে দাও৷ দিয়াবলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও, তাহলে সে তোমাদের ছেড়ে পালিয়ে যাবে৷ 8 তোমরা ঈশ্বরের নিকটবর্তী হও, তাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্তী হবেন৷ পাপীরা, তোমাদের জীবন থেকে পাপ দূর করো৷ তোমরা একই সাথে ঈশ্বরের ও জগতের সেবা করতে চেষ্টা করছ৷ তোমাদের অন্তঃকরণ পবিত্র কর৷ 9 তোমরা শোক কর, দুঃখে ভেঙ্গে পড় ও কাঁদ, তোমাদের হাসি কান্নায় পরিণত হোক্, আর আনন্দ, বিষাদে পরিণত হোক্৷ 10 তোমরা প্রভুর সামনে নত হও, তাহলে তিনি তোমাদের উন্নীত করবেন৷ 11 ভাই ও বোনেরা, তোমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে নিন্দা করা বন্ধ কর৷ যদি কেউ তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে অথবা তার ভাইয়ের বিচার করে, সে বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই কথা বলে এবং ব্যবস্থার বিচার করে৷ যদি তুমি বিধি-ব্যবস্থার বিচার কর, তাহলে তুমি আর তার পালনকারী হলে না বরং বিধি-ব্যবস্থার বিচারক হলে৷ 12 একমাত্র ঈশ্বরই বিধি-ব্যবস্থা দিতে পারেন ও বিচার করতে পারেন৷ একমাত্র তিনিই বিচারকর্তা, কেবল তিনিই আমাদের রক্ষা করতে বা বিনষ্ট করতে পারেন৷ তাই অন্য কারুরই বিচার করা তোমার অধিকারে নেই৷ 13 তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আজ বা কাল আমরা এমন শহরে যাব, য়েখানে গিয়ে এক বছর থাকব আর ব্যবসা করে লাভ করব৷’ 14 একটু ভেবে দেখ, কাল কি হবে তা তুমি জান না৷ তোমাদের প্রাণ তো কুয়াশার মতো, ক্ষণকালের জন্য তা দৃষ্টিগোচর হয়, তারপর উবে যায়৷ 15 তাই তোমাদের বলা উচিত, ‘প্রভুর ইচ্ছা হলে, আমরা বেঁচে থাকব আর এটা ওটা করব৷’ 16 কিন্তু এখন তোমরা নিজেদের বিষয়ে নিজেরাই অহঙ্কার ও দর্প করছ; আর এই প্রকারের সব অহঙ্কার অন্যায়৷ 17 মনে রেখো, য়ে সত্ কর্ম করতে জানে অথচ তা না করে, সে পাপ করে৷
1 ধনী ব্যক্তিরা শোন, তোমাদের জীবনে য়ে ঘোর দুর্দশা আসছে, তার জন্য তোমরা কাঁদ ও হাহাকার কর৷ 2 তোমাদের ধন পচে যাবে, তার কোন মূল্যই থাকবে না৷ তোমাদের পোশাক পোকায় কাটবে, তোমাদের সোনা ও রূপোয় মরচে ধরবে৷ সেই মরচে প্রমাণ করবে য়ে তোমরা অন্যায় করেছ৷ 3 আর সেই মরচে আগুনের মতো তোমাদের দেহের মাংস খেয়ে ফেলবে৷ তোমরা শেষের দিনের জন্য সম্পদ জমা করেছ৷ 4 দেখ! য়ে মজুররা তোমাদের ক্ষেতে কাজ করেছিল তাদের তোমরা মজুরি দাও নি৷ তার জন্য তারা তোমাদের বিরুদ্ধে চিত্কার করছে৷ তারা তোমাদের ক্ষেতের ফসল কেটেছে, এখন তাদের সেই আর্তনাদ স্বর্গীয় বাহিনীর প্রভু ঈশ্বরের কানে পৌঁছেছে৷ 5 এই পৃথিবীতে তোমরা ভোগ বিলাসে দিন কাটিয়ে প্রাণের লালসা মিটিয়েছ৷ বলি হবার দিনের জন্য তোমরা নিজেদের পশুর মতো মোটা করছ৷ 6 ভাল লোকদের প্রতি তোমরা কোন দয়া দেখাও নি৷ তোমরা নির্দোষ লোকদের দোষী সাব্যস্ত করেছ এবং বধ করেছ, যদিও তারা তোমাদের বিরোধিতা করে নি৷ 7 ভাই ও বোনেরা ধৈর্য্য ধর৷ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ফিরে আসবেন, তাঁর না আসা পর্যন্ত ধৈর্য্য ধর৷ মনে রেখো একজন চাযী তার ক্ষেতের মূল্যবান ফসলের জন্য অপেক্ষা করে; আর যতদিন তা প্রথম ও শেষ বর্ষণ না পায়, ততদিন সে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে৷ 8 তোমাদের ধৈর্য্য ধরা দরকার, আশা ছেড়ে দিও না৷ প্রভু যীশু শীঘ্রই আসছেন৷ 9 ভাই ও বোনেরা, তোমরা একে অপরের বিরুদ্ধে নালিশ করো না৷ তোমরা যদি নালিশ করা থেকে বিরত না হও, তাহলে তোমরা দোষী সাব্যস্ত হবে৷ দেখ, বিচারক দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন৷ 10 ভাই ও বোনেরা, দুঃখ ও কষ্টে কিভাবে ধৈর্য্য ধরতে হয় তার দৃষ্টান্তস্বরূপ সেই ভাববাদীদের অনুসরণ কর যাঁরা প্রভুর পক্ষে কথা বলেছিলেন৷ 11 আমরা বলি যাঁরা জীবনে দুঃখ কষ্ট সহিষ্ণুতার সঙ্গে মেনে নেয় তারা ধন্য৷ তোমরা ইযোবের সহিষ্ণুতার কথা শুনেছ৷ তোমরা জান য়ে ইযোবের সমস্ত দুঃখ কষ্টের পর প্রভু তাঁকে সাহায্য করেছিলেন৷ এতে জানা যায় য়ে প্রভু করুণা ও দয়ায় পরিপূর্ণ৷ 12 আমার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ করে মনে রেখো, কোন প্রতিশ্রুতি করার সময়ে স্বর্গ, পৃথিবী বা অন্য কোন নাম ব্যবহার করে তোমার কথার সত্যতা প্রমাণ করতে দিব্যি করো না৷ তোমাদের ‘হাঁ,’ য়েন হাঁ-ই হয় আর ‘না’ য়েন ‘না’ থাকে৷ এটা কর যাতে তোমাদের বিচারের দায়ে পড়তে না হয়৷ 13 তোমাদের মধ্যে কেউ কি কষ্ট পাচ্ছে? তবে সে প্রার্থনা করুক৷ কেউ কি সুখী? তবে সে ঈশ্বরের গুণকীর্তন করুক৷ 14 তোমাদের মধ্যে কেউ কি অসুস্থ হয়েছে? তবে সে মণ্ডলীর প্রাচীনদের ডাকুক৷ তারা প্রভুর নামে তার মাথায় একটু তেল দিয়ে তার জন্য প্রার্থনা করুক৷ 15 বিশ্বাসপূর্ণ প্রার্থনা সেই অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করবে, প্রভুই তাকে সুস্থতা দেবেন; আর সে যদি পাপ করে থাকে তবে প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন৷ 16 তাই তোমরা পরস্পরের কাছে পাপ স্বীকার কর, পরস্পরের জন্য প্রার্থনা কর, য়েন সুস্থতা লাভ কর, কারণ ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির প্রার্থনা খুবই শক্তিশালী ও কার্য়করী৷ 17 এলীয় আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ ছিলেন৷ তিনি প্রার্থনা করলেন য়েন বৃষ্টি না হয়, আর সাড়ে তিন বছর ধরে দেশে বৃষ্টি হল না৷ 18 পরে তিনি আবার প্রার্থনা করলেন; আর আকাশ থেকে বৃষ্টি নামল এবং ক্ষেতে ফসল হল৷ 19 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি সত্য থেকে দূরে সরে যায় আর যদি কেউ তাকে সত্যে ফিরে আসতে সাহায্য করে তবে 20 একথা মনে রেখো, য়ে পাপীকে মন্দ থেকে ফিরিয়ে আনে সে সেই ব্যক্তিকে অনন্ত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করবে এবং এই কাজের দ্বারা তার অনেক পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে৷
1 আমি পিতর, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিত - পন্ত, গালাতীয়া, কাপ্পাদকিয়া, এশিয়া ও বিথুনিয়াতে ঈশ্বরের য়েসব মনোনীত লোকরা নির্বাসনে ছড়িয়ে আছে তাদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি৷ 2 বহুপূর্বেই পিতা ঈশ্বর তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে তোমাদের মনোনীত করেছেন, যাতে তোমরা তাঁর পবিত্র লোকসমষ্টি হও৷ পবিত্র আত্মা তোমাদের পবিত্র করেছেন, ঈশ্বর চেয়েছিলেন, য়ে তোমরা তাঁর বাধ্য হবে ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের রক্তে শুচি হবে৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও শান্তি য়েন তোমাদের ওপর প্রচুর পরিমানে বর্ষিত হয়৷ 3 প্রশংসিত হোন ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা৷ ঈশ্বরের মহাদয়ায় তিনি আমাদের নতুন জীবন দিয়েছেন৷ খ্রীষ্টের পুনরুত্থান দ্বারা এই নতুন জীবন এনেছে এক নতুন প্রত্যাশা৷ 4 আমরা এখন ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রত্যাশা করব যা তিনি সন্তানদের জন্য স্বর্গে সঞ্চিত রেখেছেন, যা কখনও ধ্বংস বা বিনষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না৷ 5 বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের শক্তি তোমাদের রক্ষা করছে এবং য়ে পর্যন্ত না তোমরা পরিত্রাণ পাও সেই পর্যন্ত নিরাপদে রাখছে৷ সেই পরিত্রাণের আযোজন করা আছে যাতে তা শেষকালে তোমরা পাও৷ 6 আপাততঃ বিভিন্ন দুঃখ কষ্ট তোমাদের ব্যথিত করলেও ঐ কথা ভেবে তোমরা আনন্দ কর৷ 7 এসব দুঃখ কষ্ট আসে কেন? এরা আসে যাতে তোমাদের বিশ্বাস খাঁটি বলে প্রমাণিত হয়৷ য়ে সোনা ক্ষয় পায় তাকেও আগুনে পুড়িয়ে খাঁটি করা হয়, আর তোমাদের খাঁটি বিশ্বাস তো সেই সোনার চাইতেও মূল্যবান৷ বিশ্বাসের পরীক্ষায় যদি দেখা যায় য়ে তোমাদের বিশ্বাস অটল আছে, তবে যীশু খ্রীষ্টের পুনরাগমনের সময়ে তোমরা কত না প্রশংসা, গৌরব ও সম্মান পাবে৷ 8 তাঁকে না দেখেও তোমরা তাঁকে ভালবাস৷ তোমরা তাঁকে না দেখতে পেয়েও বিশ্বাস করছ বলে তোমরা এক অনির্বচনীয় গৌরবময় মহা আনন্দে পরিপূর্ণ হচ্ছ৷ 9 তোমাদের বিশ্বাসের এক লক্ষ্য আছে, আর সেই লক্ষ্য হল তোমাদের আত্মার পরিত্রাণ যা তোমরা লাভ করছ৷ 10 ঈশ্বরের অনুগ্রহ য়ে তোমরা লাভ করবে সে বিষয়ে ভাববাদীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন৷ তাঁরা এই যুক্তির বিষয়েও সযত্নে অনুসন্ধান করেছেন৷ 11 খ্রীষ্টের আত্মা ঐসব ভাববাদীদের মধ্যে ছিলেন এবং সেই আত্মা তাঁদের জানিয়েছিলেন খ্রীষ্টের প্রতি কি কি দুঃখভোগ ঘটবে এবং সেই দুঃখভোগের পর কত মহিমা আসবে৷ তাঁরা এও জানতে চেষ্টা করেছিলেন য়ে সেই আত্মা তাঁদের কি নির্দেশ করছেন, কখন সেই সব ঘটবে এবং তা ঘটার সময় জগত্ কেমন থাকবে৷ 12 ঐ ভাববাদীদের জানানো হয়েছিল য়ে ঐ সব সেবা কাজ তাঁদের জন্য নয়, বরং ভাববাদীরা তোমাদেরই সেবা করেছিলেন৷ স্বর্গ থেকে পাঠানো পবিত্র আত্মায় পরিচালিত হয়ে যাঁরা তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করেছিলেন, তাঁদের কাছ থেকে তোমরা সেই সব কথা শুনেছ৷ তোমরা য়ে সব বিষয় শুনেছ, সে সব বিষয় এমনকি স্বর্গদূতরাও শুনতে আগ্রহী৷ 13 সেবার উপয়োগী করে তোমাদের মনকে প্রস্তুত রেখো, আর আত্মসংযমী হও৷ যীশু খ্রীষ্টের আগমনের সময় য়ে অনুগ্রহ তোমাদের দেওয়া হবে তার ওপর সম্পূর্ণ প্রত্যাশা রাখ৷ 14 অতীতে তোমরা এটা বুঝতে না তাই তোমাদের অভিলাষ অনুসারে মন্দ পথে চলতে; এখন তোমরা ঈশ্বরের বাধ্য সন্তান, তাই অতীতে তোমরা য়েভাবে চলতে সেভাবে চলো না৷ 15 কিন্তু য়ে ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন সেই ঈশ্বর য়েমন পবিত্র তেমনি তোমরাও তোমাদের সকল কাজে পবিত্র থাক৷ 16 শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমি পবিত্র বলে তোমরা পবিত্র হও৷’ 17 ঈশ্বর কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে প্রত্যেক লোকের কাজ অনুসারে তার বিচার করেন; সেই ঈশ্বরকে যখন তোমরা পিতা বলে সম্বোধন কর তখন তোমাদের উচিত পৃথিবীতে প্রবাসীর মতো ঈশ্বর- ভয়ে জীবনযাপন করা৷ 18 তোমরা তো জান য়ে অতীতে তোমরা উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে, যা তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পেয়েছিলে, কিন্তু এখন সেই রকম জীবনযাপন করা থেকে তোমরা মুক্তি পেয়েছ৷ ঈশ্বর নশ্বর সোনা বা রূপোর বিনিময়ে তোমাদের মুক্তি ক্রয় করেন নি৷ 19 কিন্তু নির্দোষ ও নিখুঁত মেষশাবক, খ্রীষ্টের বহুমূল্য রক্ত দিয়ে তোমাদের ক্রয় করেছেন৷ 20 জগত সৃষ্টির আগেই খ্রীষ্টকে মনোনীত করা হয়েছিল; কিন্তু এই শেষ সময়ে তোমাদের জন্য তিনি প্রকাশিত হলেন৷ 21 খ্রীষ্টের মাধ্যমেই তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়েছ৷ ঈশ্বর মৃতদের মধ্য থেকে খ্রীষ্টকে পুনরুত্থিত করে তাঁকে মহিমান্বিত করেছেন৷ সে জন্যই ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের বিশ্বাস ও প্রত্যাশা আছে৷ 22 সত্যের অনুগামী হয়ে তোমরা নিজেদের শুদ্ধ করেছ, তাই তোমাদের অন্তরে বিশ্বাসী ভাই ও বোনেদের জন্য প্রকৃত ভালবাসা রয়েছে৷ সুতরাং এখন তোমরা তোমাদের সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে একে অপরকে ভালবাসো৷ 23 কোন নশ্বর বীজ থেকে তোমাদের এই নতুন জন্ম হয় নি৷ এই জীবন সন্ভব হয়েছে এক অবিনশ্বর বীজ থেকে৷ ঈশ্বরের সেই জীবন্ত ও চিরস্থাযী বাক্য দ্বারাই তোমাদের নতুন জন্ম হয়েছে৷ 24 তাই শাস্ত্র বলে:‘মানুষ মাত্রেই ঘাসের মতো আর ঘাসের ফুলের মতোই তাদের মহিমা৷ ঘাস শুকিয়ে যায়, ফুল ঝরে পড়ে; 25 কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য চিরকাল থাকে৷’যিশাইয় 40:6-8বাক্য হচ্ছে সেই সুসমাচার যা তোমাদের কাছে প্রচার করা হয়েছে৷
1 তাই তোমরা এমন কিছু করো না যাতে অপরেব্যথা পায়৷ মিথ্যা বলো না, ছলনা করো না, 2 হিংসা করো না, কারো সম্পর্কে নিন্দাবাদ করো না৷ এসব মন্দ বিষয়গুলি তোমাদের অন্তর থেকে দূর করে দাও৷ 3 নবজাত শিশুর মতো হও, খাঁটি আধ্যাত্মিক দুধের জন্য আকাঙ্খা রাখ, যা পান করে তোমরা বৃদ্ধিলাভ করবে ও তোমাদের পরিত্রাণ হবে৷ তোমরা এর মধ্যেই প্রভুর সেই দয়ার আস্বাদ পেয়েছ৷ 4 প্রভু যীশু হলেন জীবন্ত প্রস্তর৷ জগতের লোক সেই প্রস্তর অগ্রাহ্য় করল; কিন্তু তিনিই সেই ‘প্রস্তর’ য়াঁকে ঈশ্বর মনোনীত করেছেন৷ ঈশ্বরের চোখে তিনি মহামূল্য, তাই তোমরা তাঁর কাছে এস৷ 5 তোমরাও এক একটি জীবন্ত প্রস্তর সুতরাং সেই আত্মিক ধর্মধাম গড়বার জন্য তোমাদের ব্যবহার করতে দাও, যাতে পবিত্র যাজক হিসাবে তোমরা আত্মিক বলি উত্সর্গ করতে পার, যা খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে গ্রহণীয় হবে৷ 6 আর শাস্ত্রেও একথা আছে:‘দেখ, আমি সিযোনে একটি প্রস্তর স্থাপন করছি, যা মনোনীত মহামূল্য কোণের প্রধান প্রস্তর৷ তার ওপর য়ে মানুষ বিশ্বাস রাখবে তাকে কখনই লজ্জায় পড়তে হবে না৷’যিশাইয় 28:16 7 যাঁরা তাঁকে বিশ্বাস করে তাদের কাছে সেই প্রস্তর (যীশু) মহামূল্যবান; কিন্তু যাঁরা তাঁকে অবজ্ঞা করে তাদের কাছে তিনি হলেন সেই প্রস্তর:‘রাজমিস্ত্রিরা য়ে প্রস্তর বাতিল করে দিয়েছিল, সেটাই হয়ে উঠল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তর৷’গীতসংহিতা 118:22 8 শাস্ত্র আবার এই কথাও বলে যাঁরা বিশ্বাস করে না তাদের পক্ষে;‘এটা এমনই এক প্রস্তর যাতে মানুষ হোঁচট খায়, আর সেই প্রস্তরের দরুণ অনেক লোক হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে৷’ যিশাইয় 8:14তারা ঈশ্বরের বাক্য অমান্য করে বলেই হোঁচট খায় আর এটাই তো তাদের বিধি নির্দিষ্ট পরিণাম৷ 9 কিন্তু তোমরা সেরকম নও, তোমরা মনোনীত মানবগোষ্ঠী, রাজকীয় যাজককুল, এক পবিত্র জাতি৷ তোমরা ঈশ্বরের আপন জনগোষ্ঠী, তাই তোমরা ঈশ্বরের আশ্চর্য কর্মকাণ্ডের কথা বলতে পারো৷ যিনি তোমাদের অন্ধকার থেকে তাঁর অপূর্ব আলোয় নিয়ে এসেছেন, তোমরা তাঁরই গুণগান কর৷ 10 আগে তোমরা তাঁর প্রজা ছিলে না কিন্তু এখন তোমরা ঈশ্বরের আপন প্রজাবৃন্দ; একসময় তোমরা ঈশ্বরের দয়া পাও নি কিন্তু এখন তা পেয়েছ৷ 11 প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা এই পৃথিবীতে বিদেশী ও আগন্তুক৷ এই জন্য আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, দৈহিক কামনা বাসনা থেকে নিজেদের দূরে রাখ, কারণ এসব তোমাদের আত্মার বিরুদ্ধে লড়াই করে; 12 তোমরা এমন লোকদের মধ্যে বসবাস করছ যাঁরা সত্য ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না, তারা বলতে পারে য়ে তোমরা ভুল কাজ করছ৷ তাই সত্ এবং ভাল জীবনযাপন কর, তাহলে তোমাদের সত্ কাজ ও স্বচক্ষে দেখে প্রভুর প্রত্যাগমনের দিন তারা ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করবে৷ 13 জগতের শাসনকর্তাদের বাধ্য হও; প্রভুর জন্যই তা কর৷ 14 রাজ্যের সর্বময় কর্তা হিসাবে রাজার বাধ্য হও৷ অন্যায়কারীদের শাস্তি দিতে এবং যাঁরা সত্ কাজ করে তাদের প্রশংসা করতে রাজা কর্ত্তৃক য়ে নেতারা নিযুক্ত, তাদের বাধ্য হও৷ 15 এইভাবে তোমরা ভালো ভালো কাজ করে, সেই সব মূর্খ লোকদের তোমাদের সম্পর্কে মূর্খের মত কথা বলা থেকে বিরত কর; ঈশ্বরও তাই চান৷ 16 স্বাধীন লোক হিসাবে বাস কর; কিন্তু এই স্বাধীনতাকে অন্যায় কাজ করার ছুতো হিসেবে ব্যবহার করো না, বরং ঈশ্বরের লোক হিসাবে জীবনযাপন কর৷ 17 সকল লোককে যথোচিত সম্মান দিও৷ সব জায়গায় সকল বিশ্বাসী ভাইদের ভালবাস৷ ঈশ্বরকে ভয় কর আর রাজাকে সম্মান দিও৷ 18 দাসেরা, তোমরা অবশ্যই তোমাদের মনিবদের সম্মান করবে এবং তাদের অনুগত থাকবে৷ কেবল দয়ালু ও ভাল মনিবদের নয়, নিষ্ঠুর প্রকৃতির মনিবদেরও বাধ্য হও৷ 19 কারণ যদি ঈশ্বর সম্বন্ধে সচেতন এমন কেউ অন্যায়ভাবে পাওয়া কষ্টের ব্যথা সহ্য করে, তাতে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন৷ 20 বাস্তবে যখন অন্যায় কাজ করার জন্য তোমরা মার খাও এবং তা সহ্য কর তাতে প্রশংসার কিছু আছে কি? কিন্তু ভাল কাজ করে যদি কষ্টভোগ সহ্য কর তবে ঈশ্বরের চোখে তা প্রশংসার য়োগ্য৷ 21 ঈশ্বর এই জন্যই তোমাদের আহ্বান করেছেন৷ খ্রীষ্টও তোমাদের জন্য কষ্টভোগ করেছেন, আর এইভাবে তিনি তোমাদের কাছে এক আদর্শ রেখে গেছেন, য়েন তোমরা তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ কর৷ 22 ‘তিনি কখনও কোন পাপ করেন নি, এবং তাঁর মুখে কখনও কোন ছলনার কথা শোনা যায় নি৷’যিশাইয় 53:9 23 তাঁকে অপমান করলে, তিনি তার জবাবে কাউকে অপমান করেন নি৷ তাঁর কষ্টভোগের সময় তিনি প্রতিশোধ নেবার ভয় দেখান নি৷ কিন্তু যিনি ন্যায় বিচার করেন, তাঁরই ওপর বিচারের ভার দিয়েছিলেন৷ 24 ক্রুশের ওপরে তিনি নিজ দেহে আমাদের সমস্ত পাপের বোঝা বইলেন, য়েন আমরা আমাদের পাপের দিক থেকে মৃত হয়ে ধার্মিকতার জন্য জীবনযাপন করি৷ তাঁর দেহের ক্ষত দ্বারা তোমরা সুস্থতা লাভ করেছ৷ 25 তোমরা ভুল পথে যাওয়া মেষের মত ঘুরে বেড়াচ্ছিলে, কিন্তু এখন তোমরা তোমাদের প্রাণের পালক ও রক্ষকের কাছে ফিরে এসেছ৷
1 ঠিক সেইরকম স্ত্রীরা, তোমরা অবশ্যই তোমাদের স্বামীর বশ্যতা স্বীকার করো যাতে যাঁরা ঈশ্বরের শিক্ষাকে অনুসরণ করে না এমন স্বামীরা তোমাদের ব্যবহারের দ্বারা খ্রীষ্টের দিকে আকৃষ্ট হয়৷ 2 তাদের কিছু বলার প্রযোজন নেই, তারা নিজেদের স্ত্রীদের শুদ্ধ ও সম্মানজনক আচার ব্যবহার দেখে আকৃষ্ট হবে৷ 3 চুলের খোঁপা, সোনার অলঙ্কার অথবা সূক্ষ্ম জামা কাপড় এইসব নশ্বর ভুষণ দ্বারা নয়, 4 বরং তোমাদের ভুষণ হওয়া উচিত তোমাদের অন্তরের মধ্যে লুকোনো সত্তা নম্রতা ও শান্ত স্বভাব, যা ঈশ্বরের চোখে মহামূল্যবান৷ 5 এইভাবেই সেই পবিত্র মহিলারা যাঁরা অতীতে ঈশ্বরে ভরসা রাখত তারা স্বামীদের প্রতি তাদের সমীহপূর্ণ ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে নিজেদের সুন্দরী করে তুলতো৷ 6 য়েমন সারা অব্রাহামের অনুরক্তা ছিলেন এবং তাকে ‘মহাশয়’ বলে ডাকতেন৷ মহিলারা, তোমরা যদি ভীত না হয়ে যা ঠিক তাই কর তবে তা প্রমাণ করবে য়ে তোমরা সারার য়োগ্য সন্ততি৷ 7 সেইভাবে তোমরা স্বামীরাও জ্ঞানপূর্বক তোমাদের স্ত্রীদের সাথে বাস কর৷ তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর৷ কারণ তারা তোমাদের থেকে দুর্বল হলেও ঈশ্বর তাদেরও সমানভাবে আশীর্বাদ করেন, য়ে আশীর্বাদ অনুগ্রহের, যা সত্য জীবন দান করে৷ তাদের সঙ্গে য়েরূপ ব্যবহার করা তোমাদের উচিত তা যদি না কর তবে তোমাদের প্রার্থনায় বাধা সৃষ্টি হতে পারে৷ 8 তোমরা সকলে শান্তিতে বাস কর, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হও, ভাই ও বোনের প্রতি প্রেমময়, সমব্যথী এবং নম্র হও৷ 9 মন্দের পরিবর্তে মন্দ করো না, অথবা অপমান করলে অপমান ফিরিয়ে দিও না, বরং ঈশ্বরের কাছে তার জন্য প্রার্থনা কর য়েন তিনি তাকে আশীর্বাদ করেন, কারণ এই করতেই তোমরা আহূত, যাতে তোমরা ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেতে পারো৷ 10 শাস্ত্রে বলছে:‘য়ে জীবন উপভোগ করতে চায় ও শুভ দিন দেখতে চায়, সে মন্দ কথা থেকে তার জিভকে য়েন সংযত রাখে; আর মিথ্যা কথা বলা থেকে ঠোঁটকে য়েন সামলে রাখে৷’ 11 পাপের পথে না গিয়ে সে সত্ কর্ম করুক; শান্তির চেষ্টা করে সেই মতো চলুক৷ 12 কারণ যাঁরা ধার্মিক তাদের প্রতি প্রভুর সজাগ দৃষ্টি আছে এবং তাদের প্রার্থনা শোনবার জন্য তাঁর কান খোলা আছে৷ কিন্তু যাঁরা মন্দ পথে চলে প্রভু তাদের দিক থেকে তাঁর মুখ ফিরিয়ে নেন৷’গীতসংহিতা 34:12-16 13 তোমরা যদি সব সময় ভাল কাজই করতে চাও তবে কে তোমাদের ক্ষতি করবে? 14 কিন্তু যদি ন্যায় পথে চলার জন্য নির্যাতিত হও, তাহলে তোমরা ধন্য আর, ‘তোমরা ঐ লোকদের ভয় করো না বা তাদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হযো না৷’ 15 বরং অন্তরে খ্রীষ্টকে পবিত্র প্রভু বলে মেনে নাও৷ তোমাদের সবার য়ে প্রত্যাশা আছে সেই বিষয়ে তোমাদের যখন কেউ জিজ্ঞাসা করে তখন তার যথাযথ জবাব দিতে তোমরা সব সময় প্রস্তুত থেকো৷ 16 কিন্তু এই জবাব বিনয় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দেবে৷ তোমাদের বিবেক শুদ্ধ রেখো, যাতে তোমরা সমালোচিত না হও, তাহলে যাঁরা তোমাদের খ্রীষ্টীয় সত্ জীবনযাপনের প্রতি অপমান প্রদর্শন করে তারা লজ্জিত হবে৷ 17 কারণ অন্যায় করে দুঃখভোগ করার চেয়ে বরং ঈশ্বরের যদি এমন ইচ্ছা হয়, ভাল কাজ করে দুঃখভোগ করা অনেক ভাল৷ 18 কারণ খ্রীষ্ট নিজে পাপের জন্য একবার চিরকালের জন্য সবার হয়ে কষ্টভোগ করেছিলেন৷ সেই ন্যায়পরায়ণ মানুষ অন্যায়কারী মানুষের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন৷ এই কাজ তিনি করেছিলেন ঈশ্বরের কাছে তোমাদের পৌঁছে দেওয়ার জন্য৷ দৈহিকভাবে তাঁকে মারা হয়েছিল, কিন্তু আত্মায় তিনি জীবিত হলেন৷ 19 সেই অবস্থায় তিনি কারারুদ্ধ আত্মাদের কাছে গিয়ে প্রচার করলেন৷ 20 সেই কারারুদ্ধ আত্মারা বহুকাল আগে নোহের সময়ে ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছিল৷ নোহের জাহাজ তৈরীর সময় ঈশ্বর তাদের জন্য ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করছিলেন৷ সেই জাহাজে কেবল অল্প কিছু লোক (আট জন) জলের দ্বারা রক্ষা পেল৷ 21 সেই জল বাপ্তিস্মের মত যা এখন তোমাদের রক্ষা করে৷ শরীরের ময়লা সেই বাপ্তিস্মের দ্বারা ধুয়ে যায় না; কিন্তু তা ঈশ্বরের কাছে সত্ বিবেক বজায় রাখার জন্য এক আবেদন৷ যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের কারণে এটা তোমাদের রক্ষা করে৷ 22 যীশু স্বর্গারোহণ করে পিতা ঈশ্বরের ডানপাশে আছেন, আর স্বর্গদূতরা, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতগণ এবং শক্তিধররা এখন তাঁর অধীনে৷
1 তাই বলছি, খ্রীষ্ট নিজেই যখন তাঁর মরদেহে দুঃখভোগ করলেন, তখন তোমরাও সেই একই মনোভাব নিয়ে নিজেদের মনটাকে দৃঢ় কর, কারণ দেহে যার দুঃখভোগ হয়েছে, সে পাপ করা থেকে নিবৃত্ত হয়েছে৷ 2 নিজেদের শক্তিশালী করে তোলো যাতে মানবিক বাসনার অনুগামী না হয়ে তোমরা বাকি জীবন ঈশ্বর তোমার কাছে যা চান তা করে কাটাতে পার৷ 3 কারণ অতীতে অবিশ্বাসীরা য়েমন চলেছিল তেমনি চলে তোমরা অনেক সময় নষ্ট করেছ৷ তোমরা য়ৌন পাপে ও কামোচ্ছাসে লিপ্ত ছিলে এবং হুল্লোড়পূর্ণ মাতলামিতে ভরা ভোজসভায় য়োগ দিয়ে ও ঘৃন্য মূর্তিপূজা করেই তো দিন কাটিয়েছ৷ 4 কিন্তু এখন অবিশ্বাসী লোকেরাই দেখে আশ্চর্য হয় য়ে তোমরা আর সেই জংলী বেপরোয়া জীবনযাপনে য়োগ দাও না; আর সেই জন্য তারা তোমাদের গালাগালি ও অপবাদ দেয়৷ 5 কিন্তু তাদের এই রকম আচরণের জন্য তাঁর (খ্রীষ্টের) কাছে কৈফিয়ত্ দিতে হবে, যিনি জীবিত ও মৃতদের বিচার করবেন৷ 6 এই কারণেই এই সুসমাচার সেই সমস্ত বিশ্বাসীদের কাছে প্রচার করা হয়েছিল যাঁরা আজকে মৃত; য়েন দৈহিকভাবে মানুষের মত তাঁদের মৃত্যুর বিধান দেওয়া হলেও ঈশ্বরের মত তাঁরা আত্মার দ্বারা অনন্তকাল বাস করেন৷ 7 সেই সময় ঘনিয়ে আসছে যখন সবকিছুই শেষ হবে, সুতরাং মন স্থির রাখ ও আত্মসংযমী হও৷ এটা তোমাদের প্রার্থনা করতে সাহায্য করবে৷ 8 সব থেকে বড় কথা এই য়ে তোমরা পরস্পরকে একাগ্রভাবে ভালবাস, কারণ ভালবাসা অনেক অনেক পাপ ঢেকে দেয়৷ 9 কোনরকম অভিযোগ না করে পরস্পরের প্রতি অতিথিপরায়ণ হও৷ 10 তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে য়েমন আত্মিক উপহার পেয়েছ, সেই অনুসারে উপযুক্ত অধ্যক্ষের মত একে অপরকে সাহায্য কর৷ 11 যদি কেউ প্রচার করে, তবে সে এমনভাবে তা করুক, য়েন ঈশ্বরের বাক্য বলছে৷ যদি কেউ সেবা করে, সে ঈশ্বরের দেওয়া শক্তি অনুসারেই তা করুক, যাতে সব বিষয়ে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর প্রশংসিত হন৷ গৌরব ও পরাক্রম যুগে যুগে তাঁরই হোক্৷ আমেন৷ 12 প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের যাচাই করার জন্য য়ে কষ্টের আগুন তোমাদের মধ্যে জ্বলছে, তাতে তোমরা আশ্চর্য হযো না৷ কোন অদ্ভুত কিছু তোমাদের প্রতি ঘটছে বলে মনে করো না৷ 13 বরং তোমরা আনন্দ করো য়ে খ্রীষ্টের দুঃখভোগের ভাগীদার হতে পেরেছ৷ এরপর তাঁর মহিমা যখন প্রকাশ পাবে তখন তোমরা মহা আনন্দ লাভ করবে৷ 14 তোমরা খ্রীষ্টানুসারী হয়েছ বলে কেউ যদি তোমাদের অপমান করে, তবে তোমরা ধন্য, কারণ ঈশ্বরের মহিমার আত্মা তোমাদের মধ্যে বিরাজ করছে৷ 15 তোমাদের মধ্যে কেউ য়েন খুনী, কি চোর, কি দুষ্কর্মকারী রূপে বা অন্যায়ভাবে অন্য়ের ব্যাপারে হাত দিয়ে দুঃখভোগ না করে৷ 16 কিন্তু যদি কেউ খ্রীষ্টীয়ান বলে দুঃখভোগ করে, তবে সে য়েন লজ্জা না পায়, কিন্তু তার সেই নাম (খ্রীষ্টীয়ান) আছে বলে সে ঈশ্বরের প্রশংসা করুক৷ 17 বিচার আরন্ভ হবার সময় হয়েছে এবং তা ঈশ্বরের লোকদের থেকেই শুরু করা হবে৷ সেই বিচার যদি আমাদের থেকেই শুরু করা হয় তবে যাঁরা ঈশ্বরের সুসমাচার প্রত্যাখ্যান করে তাদের পরিণাম কি হবে? 18 শাস্ত্র য়েমন বলে, ‘নীতিপরায়ণদের পরিত্রাণ লাভ যদি এমন কঠিন হয় তবে যাঁরা ঈশ্বরবিহীন ও পাপী তাদের কি হবে?’ 19 যাঁরা ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দুঃখভোগ করছে, তারা সেই বিশ্বস্ত সৃষ্টিকর্তার হাতে নিজেদের (আত্মাকে) সঁপে দিক এবং ভাল কাজ করে যাক্৷
1 যাঁরা মণ্ডলীর প্রাচীন তাদের কাছে এখন আমার এই বক্তব্য, আমি নিজেও একজন প্রাচীন হিসেবে খ্রীষ্টের দুঃখভোগের একজন সাক্ষী৷ সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে য়ে ঐশীমহিমা প্রকাশিত হবে আমি হব তার একজন অংশীদার৷ আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, 2 তোমাদের তত্ত্বাবধানে ঈশ্বরের য়ে পাল আছে তাদের দেখাশোনা কর৷ স্বেচ্ছায় তাদের পরিচর্য়া কর, বাধ্য হয়ে নয় বা কিছু পাবার আশায়ও নয়, বরং স্বেচ্ছায় ও আগ্রহের সঙ্গে, ঈশ্বর য়েমন চান৷ 3 যাদের দাযিত্বভার তোমরা পেয়েছ তাদের ওপর প্রভুত্ব চালিও না; কিন্তু পালের আদর্শ স্বরূপ হও৷ 4 য়েদিন প্রধান পালক (খ্রীষ্ট) দেখা দেবেন সেদিন তোমরা নিশ্চয়ই সেই অম্লান মহিমাময় মুকুট লাভ করবে৷ 5 যুবকরা, তোমরা প্রাচীনদের অনুগত হও, আর নতনম্র হয়ে একে অপরের সেবা কর, কারণ‘ঈশ্বর অহঙ্কারীদের বিরোধিতা করেন; কিন্তু নতনম্রদের অনুগ্রহ করেন৷’হিতোপদেশ 3:34 6 তাই তোমরা ঈশ্বরের পরাক্রান্ত হাতের নীচে অবনত থাক, য়েন ঠিক সময়ে তিনি তোমাদের উন্নীত করেন৷ 7 তোমাদের সমস্ত ভাবনা চিন্তার ভার তাঁকে দাও, কারণ তিনি তোমাদের জন্য চিন্তা করেন৷ 8 তোমরা সংযত ও সতর্ক থাক, তোমাদের মহাশত্রু দিয়াবল গর্জনকারী সিংহের মত কাকে গ্রাস করবে তা খুঁজে বেড়াচ্ছে৷ 9 তোমরা দিয়াবলের প্রতিরোধ কর, বিশ্বাসে বলবান হও৷ তোমরা জান, সারা বিশ্বে তোমাদের বিশ্বাসী ভাইরাও এই রকম দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়েই দিন কাটাচ্ছে৷ 10 হ্যাঁ, তোমাদের দুঃখভোগ অল্পকালের জন্য; কিন্তু তারপর ঈশ্বর সব কিছু ঠিক করে দেবেন ও তোমাদের শক্তিশালী করে তুলবেন৷ তিনি পতন থেকে রক্ষা করার জন্য তোমাদের সাহায্য করবেন৷ তিনিই সেই ঈশ্বর যিনি সবাইকে অনুগ্রহ বিতরণ করেন৷ যীশু খ্রীষ্টে তাঁর অনন্ত মহিমার ভাগীদার হবার জন্য তিনি তোমাদের আহ্বান করেছেন৷ 11 যুগে যুগে তাঁরই পরাক্রম হোক্৷ আমেন৷ 12 সীল, যাকে আমি খ্রীষ্টে বিশ্বস্ত ভাই বলে জানি তার মাধ্যমে তোমাদের কাছে এই সংক্ষিপ্ত চিঠি পাঠাচ্ছি; য়েন তোমরা আশ্বস্ত ও উত্সাহিত হও৷ আমি একথা বলতে চাই, এই হচ্ছে ঈশ্বরের প্রকৃত অনুগ্রহ এবং সেই অনুগ্রহে দৃঢ়ভাবে স্থির থাক৷ 13 বাবিলের মণ্ডলী, যাকে ঈশ্বর তোমাদের সাথে মনোনীত করেছেন, তারা তাদের শুভেচ্ছা তোমাদের পাঠাচ্ছে এবং আমার পুত্র মার্কও শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 14 প্রেমচুম্বনে পরস্পর মঙ্গলাবাদ কর৷ তোমরা যাঁরা খ্রীষ্টে আছ তাদের সবার প্রতি শান্তি নেমে আসুক৷
1 আমি শিমোন পিতর, যীশু খ্রীষ্টের দাস ও প্রেরিত৷ যাঁরা আমাদের ঈশ্বরের ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের ধার্মিকতার মাধ্যমে আমাদের মতো এক মহামূল্য বিশ্বাস লাভ করেছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি৷ যা ন্যায় তিনি তাই করেন৷ 2 অনুগ্রহ ও শান্তি প্রচুর পরিমাণে তোমাদের প্রতি বর্ষিত হোক্৷ তোমরা ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু যীশুকে গভীরভাবে জানো বলে এই অনুগ্রহ ও শান্তি ভোগ করবে৷ 3 যীশুর কাছে ঈশ্বরের শক্তি আছে৷ তাঁর শক্তি আমাদের ঈশ্বরের প্রতি ভক্তিপূর্ণ জীবনযাপন করার সমস্ত প্রযোজনীয় বিষয় দান করেছে৷ আমরা এই সমস্ত কিছু পেয়েছি কারণ আমরা তাঁকে জানি৷ যীশু তাঁর মহিমা-গুণে এবং সদগুণে আমাদের ডেকেছেন৷ 4 তাঁর মহিমায় এবং সদগুণে যা তিনি দেবেন বলেছিলেন সেই মূল্যবান এবং মহান প্রতিশ্রুতিগুলি তিনি আমাদের দিয়েছেন, যাতে তোমরা ঐ সব প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্য দিয়ে জগতের মন্দ অভিলাষজনিত য়ে সব দুর্নীতি আছে তা থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গীয় জীবনের অংশীদার হতে পার৷ 5 তোমরা এই সব আশীর্বাদ পেয়েছ বলে অতি যত্ন করে তা তোমাদের জীবনে য়োগ করে নিতে প্রাণপণ চেষ্টা কর৷ তোমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে সদগুণ য়োগ কর, সদগুণের সঙ্গে জ্ঞান, 6 জ্ঞানের সঙ্গে সংযম, সংযমের সঙ্গে ধৈর্য্য, ধৈর্য্যের সঙ্গে ঈশ্বরভক্তি, ঈশ্বরভক্তির সঙ্গে ভ্রাতৃস্নেহ, ভ্রাতৃস্নেহের সঙ্গে ভালবাসা য়োগ করে নাও৷ 7 ঈশ্বরভক্তির সঙ্গে আসে ভ্রাতৃস্নেহ, আর ভ্রাতৃস্নেহের সঙ্গে তোমার ভালবাসা য়োগ কর৷ 8 তোমাদের মধ্যে এই সব গুণ যদি থাকে আর তা বেড়ে ওঠে, তবে তোমাদের জীবন আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের জ্ঞানে কখনও নিষ্কর্মা বা নিষ্ফল হবে না৷ 9 কিন্তু এইসব গুণগুলি যার নেই সে পরিষ্কারভাবে দেখতে পায় না, সে অন্ধ৷ সে ভুলে গেছে য়ে তার অতীতের সকল পাপ ধুয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ 10 তাই আমার ভাই ও বোনেরা, ঈশ্বর তোমাদের ডেকেছেন ও মনোনীত করেছেন৷ সেই সত্যকে দৃঢ় করার জন্য তোমরা আপ্রাণ চেষ্টা করো৷ যদি তোমরা এগুলি কর তবে কখনও হোঁচট খেয়ে পড়বে না; 11 আর আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের অনন্ত রাজ্যে তোমাদের মহানভাবে ও উদারভাবে স্বাগত জানানো হবে৷ 12 তোমরা তো এসব জানো আর য়ে সত্য তোমাদের দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে তোমরা দৃঢ়ভাবে যুক্ত রয়েছ; কিন্তু এগুলি মনে রাখতে আমি সর্বদা তোমাদের সাহায্য করব৷ 13 যতদিন বেঁচে থাকি, আমি মনে করি, এই বিষয়গুলি তোমাদের মনে করিয়ে দেওয়া আমার কর্তব্য৷ 14 আমি জানি য়ে খুব শিগ্গিরই আমাকে এই দেহত্যাগ করতে হবে৷ আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট পরিষ্কারভাবে তা আমাকে জানিয়েছেন৷ 15 আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি, যাতে আমার মৃত্যুর পরেও তোমরা এসব বিষয় মনে রাখতে পার৷ 16 যখন আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মহাপরাক্রমসহ আগমন সম্বন্ধে বলেছিলাম, তখন আমরা কোন বানানো গল্প বলি নি৷ আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পরাক্রম স্বচক্ষে দেখেছি৷ 17 যীশু পিতা ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে সম্মান ও মহিমা লাভ করেছিলেন তা এই বাণীর মধ্য দিয়েই এসেছিল, ‘এই আমার প্রিয় পুত্র, এর প্রতি আমি সন্তুষ্ট৷’ 18 যীশুর সঙ্গে আমরা যখন পবিত্র পর্বতে ছিলাম তখন স্বর্গ থেকে বলা ঐ বাণী আমরা শুনেছিলাম৷ 19 সেইজন্য ভাববাদীরা যা বলেছেন আমরা সে বিষয়ে নিশ্চিত৷ ভাববাদীরা যা বলে গেছেন সে বিষয়ে মনোয়োগ দেওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল৷ তাঁরা যা বলেছেন তা য়েন অন্ধকার জায়গায় উজ্জ্বল আলোর মতো৷ তা য়ে পর্যন্ত না দিনের শুরু হয় ও তোমাদের হৃদয়ে প্রভাতী তারার উদয় হয় সেই পর্যন্ত অন্ধকারের মাঝে আলো দেয়৷ 20 এটা তোমাদের বিশেষভাবে জানা দরকার য়ে শাস্ত্রের কোন ভাববাণী বক্তার নিজের ব্যাখ্যার ফল নয়৷ 21 ভাববাণী কখনই মানুষের ইচ্ছাক্রমে আসে নি, কিন্তু পবিত্র আত্মার পরিচালনায় ভাববাদীরা ঈশ্বরের কথা বলেছেন৷
1 অতীতে ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে ভণ্ড ভাববাদীরা ছিল৷ একইভাবে তোমাদের দলের মধ্যে কিছু কিছু ভণ্ড শিক্ষক প্রবেশ করবে৷ তারা ভুল শিক্ষা দেবে; য়ে শিক্ষা গ্রহণ করলে লোকেদের সর্বনাশ হবে৷ সেই ভণ্ড শিক্ষকরা এমন কৌশলে তোমাদের শিক্ষা দেবে যাতে তারা য়ে ভ্রান্ত শিক্ষা দিচ্ছে এ তোমরা ধরতে পারবে না৷ তারা, এমন কি, প্রভু যিনি মুক্তি এনে দিয়েছেন তাঁকে পর্যন্ত অস্বীকার করবে৷ তাই তাদের নিজেদের ধ্বংস তারা সত্বর ডেকে আনবে৷ 2 তারা য়ে সমস্ত মন্দ বিষয়ে লিপ্ত, বহুলোক সেই বিষয়গুলিতে তাদের অনুসরণ করবে৷ ঐ লোকদের প্ররোচনায় বহুলোক সত্যের পথের বিষয়ে নিন্দা করবে৷ 3 এই ভণ্ড শিক্ষকরা তোমাদের কাছ থেকে কেবল অর্থলাভ করতে চাইবে৷ তাই তারা অসত্য কল্পিত কাহিনী বানিয়ে বলবে৷ অনেকদিন ধরেই ঐ ভণ্ড শিক্ষকদের জন্য শাস্তি অপেক্ষা করছে আর তারা ঈশ্বরের হাত এড়িয়ে য়েতে পারবে না; তিনি তাদের ধ্বংস করবেন৷ 4 যাঁরা পাপ করেছিল সেই স্বর্গদূতদেরও ঈশ্বর ছাড়েন নি; তিনি তাদের নরকে পাঠিয়েছিলেন৷ ঈশ্বর বিচারের দিন পর্যন্ত অন্ধকারময় গ্ব্বরে তাদের ফেলে রাখলেন৷ 5 ঈশ্বর প্রাচীন জগতকে ছেড়ে কথা বলেন নি৷ ঈশ্বরবিরোধী লোকদের জন্য ঈশ্বর জগতে জলপ্লাবন আনলেন৷ তিনি কেবলমাত্র নোহ এবং তার সঙ্গে অন্য সাতজনকে রক্ষা করেছিলেন৷ এই নোহ ঠিক পথে চলবার জন্য মানুষকে শিক্ষা দিয়েছিলেন৷ 6 সদোম ও ঘমোরা নগরকে ঈশ্বর দণ্ডিত করেছিলেন৷ ঈশ্বর সেই দুটি নগরকে ধ্বংস করে যাঁরা তাঁর বিরোধিতা করে তাদের জন্য শেষ ফলের এক উদাহরণ হিসেবে তা স্থাপন করেছিলেন৷ 7 ঐ ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরী থেকে ঈশ্বর লোটকে উদ্ধার করেছিলেন৷ লোট ভাল লোক ছিলেন এবং ঐ নগরের দুষ্ট লোকদের অনৈতিক চালচলনে তিনি পীড়িত হতেন৷ 8 সেই নীতিপরায়ণ মানুষ ঐ দুষ্ট লোকদের মধ্যে দিনের পর দিন বাস করতেন৷ তাঁর ধার্মিক আত্মা এই সকল লোকদের বেআইনী কাজকর্ম দেখে এবং এগুলির কথা শুনে যন্ত্রণা ভোগ করতেন৷ 9 হ্যাঁ, ঈশ্বরই এই সকল কার্য় সাধন করলেন৷ তাই প্রভু ঈশ্বর জানেন যাঁরা তাঁর সেবা করে, তাদের কিভাবে উদ্ধার করতে হয়৷ তিনি তাদের সমস্ত কষ্টের সময়ে তাদের উদ্ধার করেন৷ প্রভু এও জানেন কিভাবে দুষ্ট লোকদের সেই বিচারের দিনে শাস্তি দিতে হয়৷ 10 ঐ দণ্ড বিশেষভাবে তাদের জন্য, যাঁরা দুর্নীতিপরায়ণ ও কামাতুর, অধার্মিক স্বভাবের অনুসারী এবং যাঁরা প্রভুর কর্তৃত্ত্বকে সম্মান করে না৷এই সকল ভণ্ড শিক্ষকরা দুঃসাহসী ও একগুঁয়ে এবং মহিমান্বিত স্বর্গদূতের বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলতে ভয় পায় না৷ 11 ঐ সব ভণ্ড শিক্ষকদের চেয়ে স্বর্গদূতরা শক্তিতে ও পরাক্রমে বড় হয়েও প্রভুর কাছে তাদের বিষয়ে কুত্সাজনক অভিযোগ আনেন না৷ 12 এই ভণ্ড শিক্ষকরা বিচার বুদ্ধিহীন পশুর মতো, যাঁরা তাদের সহজাত প্রবৃত্তির বশে কাজ করে৷ এরা জন্মেছে ধরা পড়তে ও নিহত হবার জন্য৷ বন্য পশুদের মতোই এই শিক্ষকরা ধ্বংস হয়ে যাবে৷ 13 এই ভণ্ড শিক্ষকরা বহুলোকের ক্ষতি করেছে, তাই তারাও কষ্টভোগ করবে, তাদের কুকাজের জন্য প্রাপ্তিস্বরূপ সেই হবে তাদের বেতন৷ এই ভণ্ড শিক্ষকরা প্রকাশ্যে মন্দ কাজ করতে ভালবাসে যাতে সমস্ত লোক তা দেখতে পায়৷ তারা তোমাদের মধ্যে নোংরা দাগ ও কলঙ্কের মত৷ য়েসব মন্দ কাজ তাদের খুশী করে, সেগুলি করে তারা তা উপভোগ করে৷ যখন তারা তোমাদের সঙ্গে পান ভোজন করে তখন তোমাদের পক্ষে তা লজ্জাজনক হয়৷ 14 কোন নারীকে দেখলে এই শিক্ষকরা তার প্রতি কামাসক্ত হয়৷ এরা এইভাবে পাপ করেই চলেছে৷ যাঁরা বিশ্বাসে দুর্বল তাদের তারা পাপের ফাঁদে ফেলে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়৷ তাদের অন্তঃকরণ লোভে অভ্য়স্ত, তারা অভিশপ্ত৷ 15 এই ভণ্ড শিক্ষকরা সোজা পথ ছেড়ে ভুল পথে ভ্রমণ করছে৷ তারা বিযোরের পুত্র বিলিয়মকে অনুসরণ করে, যিনি মন্দ কাজের পারিশ্রমিক পেলে আনন্দ পেতেন৷ 16 কিন্তু একটি গাধা বিলিয়মকে বলেছিল য়ে সে ভুল কাজ করেছে৷ গাধা পশু বলে কথা বলতে পারে না; কিন্তু এই গাধা মানুষের গলায় কথা বলে ভাববাদীকে মুর্খের মত কাজ করতে দেয় নি৷ 17 এই ভণ্ড শিক্ষকরা জলবিহীন ঝরণার মতো৷ ঝোড়ো হাওয়ায় বয়ে যাওয়া মেঘের মতো৷ এক ঘোর অন্ধকার কূপ এই ভণ্ড শিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত আছে৷ 18 এরা শূন্যগর্ভ বড় বড় কথা বলে নিজেদের নিয়ে গর্ব করে৷ যাঁরা সম্প্রতি ভুল পথে চলা লোকদের সংসর্গ থেকে বেরিয়ে এসেছে তাদের দৈহিক আকর্ষণ ও বাসনায় প্রলুদ্ধ করে৷ এইসব লোকদের তারা পাপের ফাঁদে ফেলে৷ 19 এরা তাদের স্বাধীনতার প্রলোভন দেখায়; কিন্তু নিজেরা সেইসব মন্দের দাস য়েগুলি ধ্বংসের পথগামী, কারণ মানুষ তারই দাস যা তাকে চালনা করে৷ 20 যাঁরা আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে সংসারের অশুচি বিষয়গুলি থেকে মুক্ত হয়েছিল, তারা যদি তাদের পুরানো পাপের জীবনে ফিরে যায় তবে তাদের পরের অবস্থা আগের অবস্থা থেকে আরো খারাপ হবে৷ 21 য়ে পবিত্র শিক্ষা তারা লাভ করেছিল, তারা যদি সেই পবিত্র শিক্ষা থেকে সরে যায় তবে তাদের পক্ষে সেই সত্য পথ না জানাই ভাল ছিল৷ 22 একটি প্রবাদ আছে যা তাদের ক্ষেত্রে খাটে, ‘কুকুর ফেরে নিজের বমির দিকে,’এবং ‘শুযোরকে স্নান করালেও সে আবার যায় কাদায় গড়াগড়ি দিতে৷’
1 বন্ধুরা, তোমাদের কাছে এ আমার দ্বিতীয় পত্র৷ এই দুটি পত্র লিখে, কিছু বিষয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে তোমাদের সত্ চিন্তাকে নাড়া দেবার চেষ্টা করছি৷ 2 অতীতে পবিত্র ভাববাদীদের সমস্ত কথা ও প্রভু আমাদের ত্রাণকর্তার আদেশ, যা প্রেরিতদের মাধ্যমে বলা হয়েছে, তা তোমাদের স্মরণে আনতে চাইছি৷ 3 প্রথমতঃ তোমাদের বুঝতে হবে পৃথিবী শেষ হয়ে যাবার আগের দিনগুলিতে কি ঘটবে৷ লোকেরা তোমাদের উপহাস করবে৷ তারা নিজের নিজের খেয়াল খুশি মতো মন্দ পথে চলবে৷ 4 তারা বলবে, ‘তাঁর আগমণ সম্বন্ধে তাঁর প্রতিজ্ঞার কি হল? কারণ আমরা জানি আমাদের পিতৃপুরুষদের মারা যাওয়ার সময় থেকে, এমনকি সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সব কিছুই তো একই রকম ভাবে ঘটে চলেছে৷’ 5 কিন্তু বহুপূর্বে কি ঘটেছিল তা ঐসব লোকরা স্মরণ করতে চায় না৷ প্রথমে আকাশমণ্ডল ছিল এবং ঈশ্বর জলের মধ্য থেকে ও জলের দ্বারা পৃথিবী সৃষ্টি করলেন আর এসবই ঈশ্বরের মুখের বাক্য়ের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল৷ 6 সেই সময়কার জগত জলপ্লাবনের দ্বারা ধ্বংস হয়েছিল৷ 7 ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে বর্তমান এই পৃথিবী ও আকাশমণ্ডল আগুনের দ্বারা ধ্বংস হবার জন্য বিরাজ করছে৷ এই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সেই বিচারের দিনের জন্য, অধার্মিক মানুষের ধ্বংসের জন্য রক্ষিত আছে৷ 8 কিন্তু প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা এই একটা কথা ভুলে য়েও না য়ে প্রভুর কাছে এক দিন হাজার বছরের সমান ও হাজার বছর একদিনের সমান৷ 9 প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করতে সত্যি দেরী করছেন না৷ যদিও কেউ কেউ সেরকমই মনে করছে; কিন্তু তিনি তোমাদের জন্য ধৈর্য় ধরে আছেন৷ কেউ য়ে ধ্বংস হয় তা ঈশ্বর চান না, ঈশ্বর চান য়ে প্রত্যেকে মন পরিবর্তন করুক ও পাপের পথ ত্যাগ করুক৷ 10 কিন্তু প্রভুর দিন চোরের মত এসে চমকে দেবে৷ তখন আকাশ বিরাট শব্দ করে অদৃশ্য হবে; আকাশের সব কিছু আগুনে ধ্বংস করা হবে এবং পৃথিবী ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা পুড়িয়ে ফেলা হবে৷ 11 সব কিছু যখন এইভাবে ধ্বংস হতে যাচ্ছে তখন চিন্তা কর কি প্রকার মানুষ হওয়া তোমাদের দরকার৷ তোমাদের পবিত্র জীবনযাপন করা উচিত এবং ঈশ্বরের সেবার্থে কাজ করা উচিত৷ 12 পরম আগ্রহের সঙ্গে ঈশ্বরের সেই দিনের অপেক্ষায় থাকা উচিত, য়ে দিন আকাশমণ্ডল আগুনে পুড়ে ধ্বংস হবে এবং আকাশের সব কিছু উত্তাপে গলে যাবে৷ 13 কিন্তু ঈশ্বর আমাদের এক নতুন আকাশমণ্ডল ও এক নতুন পৃথিবীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ এই প্রতিশ্রুতির পূর্ণতার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি, আর সেখানে কেবল ধার্মিকতা থাকবে৷ 14 তাই প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা যখন এইসব ঘটবে বলে অপেক্ষা করছ, তখন পাপ ও দোষমুক্ত হয়ে থাকবার আপ্রাণ চেষ্টা কর, য়েন ঈশ্বরের সঙ্গে শান্তিতে থাকতে পার৷ 15 মনে রেখো, আমাদের প্রভুর ধৈর্য্য তোমাদের মুক্তির সুয়োগ দিয়েছে৷ আমাদের প্রিয় ভাই পৌলও তোমাদের একই বিষয়ে লিখেছেন৷ তাঁকে প্রদত্ত জ্ঞান অনুসারে পৌল এই কথা তাঁর সব চিঠিতে বলেছেন৷ 16 কিছু বিষয় এই পত্রের মধ্যে আছে যা বোঝা শক্ত৷ অজ্ঞ ও বিশ্বাসে দুর্বল লোকরা শাস্ত্রের অন্যান্য কথার য়েমন বিকৃত অর্থ করে, তেমনি পৌলের কথারও বিকৃত অর্থ করে নিজেদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়৷ 17 তাই প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা এসব কথা আগে থেকেই জেনেছ বলে এ বিষয়ে সতর্ক থাক, যাতে তোমরা দুষ্ট লোকদের ভুলের কবলে পড়ে নিজেদের দৃঢ় বিশ্বাস থেকে সরে না যাও৷ 18 আমাদের প্রভু ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও জ্ঞানে তোমরা বৃদ্ধি লাভ কর৷ এখন ও অনন্তকালের জন্য তাঁর মহিমা বিরাজ করুক৷ আমেন৷
1 পৃথিবীর শুরু থেকেই যা বর্তমান তেমন একটি বিষয় এখন তোমাদের কাছে বলছি:আমরা তা শুনেছি,তা স্বচক্ষে দেখেছি,তা মনোয়োগ সহকারে নিরীক্ষণ করেছি;আর নিজেদের হাত দিয়ে তা স্পর্শ করেছি৷আমরা সেই বাক্যের বিষয় বলছি যা জীবনদায়ী৷ 2 সেই জীবন আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছিল, আমরা তা দেখেছি; আর তার বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারি৷ এখন তোমাদের কাছে সেই জীবনের কথা বলছি; এ হল অনন্ত জীবন যা পিতা ঈশ্বরের কাছে ছিল৷ ঈশ্বর আমাদের কাছে সেই জীবন তুলে ধরলেন৷ 3 আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি সে বিষয়েই এখন তোমাদের কাছে বলছি; কারণ আমাদের ইচ্ছা তোমরাও আমাদের সহভাগী হও৷ আমাদের এই সহভাগীতা ঈশ্বর পিতা ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে৷ 4 আমাদের আনন্দ য়েন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সেই জন্য আমরা তোমাদের এসব লিখছি৷ 5 এই সেই বার্তা যা আমরা খ্রীষ্টের কাছ থেকে শুনেছি এবং তোমাদের কাছে ঘোষণা করছি- ঈশ্বর জ্যোতি; ঈশ্বরের মধ্যে কোন অন্ধকার নেই৷ 6 তাই আমরা যদি বলি য়ে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সহভাগীতা আছে, কিন্তু যদি অন্ধকারে জীবনযাপন করতে থাকি, তাহলে মিথ্যা বলছি ও সত্যের অনুসারী হচ্ছি না৷ 7 ঈশ্বর জ্যোতিতে আছেন, আমরা যদি সেই রকম জ্যোতিতে বাস করি, তবে বলা যায় আমাদের পরস্পরের মধ্যে সহভাগীতা আছে৷ ঈশ্বরের পুত্র যীশুর রক্ত আমাদের সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ করে৷ 8 আমরা যদি বলি য়ে আমাদের কোন পাপ নেই, তাহলে আমরা নিজেদেরই ঠকাই এবং তাঁর সত্য আমাদের মধ্যে নেই৷ 9 আমরা যদি নিজেদের পাপ স্বীকার করি, বিশ্বস্ত ও ধার্মিক ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন ও সকল অধার্মিকতা থেকে আমাদের শুদ্ধ করবেন৷ 10 আর যদি বলি, আমরা পাপ করিনি, তবে আমরা ঈশ্বরকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করি এবং তাঁর বার্তা আমাদের অন্তরে নেই৷
1 আমার প্রিয় সন্তানরা, আমি তোমাদের একথা লিখছি যাতে তোমরা পাপ না কর৷ কিন্তু কেউ যদি পাপ করে ফেলে, তবে পিতার কাছে আমাদের পক্ষে কথা বলার একজন আছেন, তিনি সেই ধার্মিক ব্যক্তি, যীশু খ্রীষ্ট৷ 2 তিনিই সেই প্রায়শ্চিত্ত বলিগুলি, যার ফলে আমাদের সব পাপ দূর হয়৷ কেবল আমাদের সব পাপ নয়, জগতের সমস্ত মানুষেরও পাপ দূর হয়৷ 3 যদি আমরা ঈশ্বরের আদেশ পালন করি, তবেই বুঝতে পারব য়ে আমরা তাঁকে জানি৷ 4 কেউ যদি বলে য়ে, ‘আমি ঈশ্বরকে জানি,’ অথচ ঈশ্বরের আদেশ পালন না করে তবে সে মিথ্যাবাদী, আর তাঁর সত্য তার অন্তরে নেই৷ 5 কিন্তু য়ে তাঁর শিক্ষা পালন করে, ঈশ্বরের ভালবাসা সত্যি তার মধ্যে পূর্ণতালাভ করেছে৷ এইভাবে আমরা সুনিশ্চিত হতে পারি য়ে আমরা তাঁর মধ্যেই অবস্থান করছি৷ 6 কেউ যদি বলে য়ে আমি ঈশ্বরে আছি তাহলে তাকে অবশ্যই তাঁর মতো জীবনযাপন করতে হবে৷ 7 প্রিয় বন্ধুরা, আমি তোমাদের কাছে কোন নতুন আদেশ লিখছি না, এ এমন এক পুরানো আদেশ, যা তোমরা আদি থেকেই পেয়েছ৷ তোমরা য়ে বার্তা শুনেছ তা হল পুরানো আদেশ. 8 কিন্তু আমি এই পুরানো আদেশই তোমাদের কাছে এক নতুন আদেশরূপে লিখছি৷ এই আদেশ সত্য এবং এর সত্যতা তোমরা যীশু খ্রীষ্টে ও তোমাদের জীবনে দেখেছ, কারণ অন্ধকার কেটে যাচ্ছে আর প্রকৃত জ্যোতি ইতিমধ্যেই উজ্জ্বল৷ 9 য়ে বলে আমি জ্যোতিতে আছি কিন্তু তার নিজের ভাইকে ঘৃণা করে, সে এখনও অন্ধকারেই আছে৷ 10 য়ে তার ভাইকে ভালবাসে, সে জ্যোতিতে রয়েছে৷ তার জীবনে এমন কিছুই নেই যা তাকে পাপী করে৷ 11 কিন্তু য়ে তার ভাইকে ঘৃণা করে সে এখনও অন্ধকারেই আছে৷ সে অন্ধকারেই বাস করে আর জানে না সে কোথায় চলেছে, কারণ অন্ধকার তাকে অন্ধ করে দিয়েছে৷ 12 প্রিয় সন্তানগণ, আমি তোমাদের লিখছি কারণ খ্রীষ্টের মাধ্যমে তোমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে৷ 13 পিতারা, আমি তোমাদের লিখছি কারণ যিনি শুরু থেকে আছেন তোমরা তাঁকে জান৷ যুবকেরা, আমি তোমাদের লিখছি কারণ তোমরা সেই পাপাত্মার ওপর জয়লাভ করেছ৷ 14 শিশুরা, আমি তোমাদের নিকট লিখছি কারণ যিনি শুরু থেকে আছেন তোমরা তাঁকে জান৷ যুবকরা, আমি তোমাদের লিখছি কারণ তোমরা শক্তিশালী, ঈশ্বরের বার্তা তোমাদের অন্তরে আছে; আর তোমরা সেই পাপাত্মার ওপর জয়লাভ করেছ৷ 15 তোমরা কেউ এই সংসার বা এই সংসারের কোন কিছু ভালবেসো না৷ কেউ যদি এই সংসারটাকে ভালবাসে তবে পিতা ঈশ্বরের ভালবাসা তার অন্তরে নেই৷ 16 কারণ এই সংসারে যা কিছু আছে,যা আমাদের পাপ প্রকৃতি পেতে ইচ্ছা করে,যা আমাদের চক্ষু পেতে ইচ্ছা করে,আর পৃথিবীর যা কিছুতে লোকে গর্ব করে৷সে সবই পিতা ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে না, আসে জগত থেকে৷ 17 এই সংসার ও তাঁর অভিলাষ সব বিলীন হতে চলেছে, কিন্তু য়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে সে চিরজীবি হবে৷ 18 প্রিয় সন্তানরা, জগতের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে৷ আর তোমরা শুনেছ য়ে খ্রীষ্টারিরা আসছে৷ এখনই সেই খ্রীষ্টারিরা এসে গেছে, এর ফলেই আমরা বুঝতে পারছি য়ে এই শেষ সময়৷ 19 সেই খ্রীষ্টারিরা আমাদের দলের মধ্যেই ছিল৷ তারা আমাদের মধ্য থেকে বাইরে চলে গেছে৷ বাস্তবে তারা কোন দিনই আমাদের লোক ছিল না, কারণ তারা যদি আমাদের দলের লোক হত, তবে আমাদের সঙ্গেই থাকত৷ তারা আমাদের ছেড়ে চলে গেল; এর দ্বারাই প্রমাণ হল য়ে তারা কেউই আদৌ আমাদের নয়৷ 20 তোমরা সেই পবিত্রতমের (খ্রীষ্টের) কাছে অভিষিক্ত হয়েছ, তাই তোমরা সকলে সত্য কি তা জান৷ তবে তোমাদের কাছে কেন আমি লিখি? 21 এটা বলার জন্য আমি লিখছি না য়ে তোমরা সত্য জান না৷ আমি তোমাদের লিখছি কারণ তোমরা সত্য জান; আর এও জান য়ে সত্য থেকে কখনও কোন মিথ্যার উত্পত্তি হতে পারে না৷ 22 তবে সেই মিথ্যাবাদী কে? সে-ই, য়ে ব্যক্তি বলে য়ে যীশুই সেই খ্রীষ্ট নন, সে-ই খ্রীষ্টের শত্রু, য়ে বলে যীশু সেই খ্রীষ্ট নয়, সেই ব্যক্তি পিতাকে বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করে না তাঁর পুত্র খ্রীষ্টকে৷ 23 য়ে পুত্রকে অস্বীকার করে, সে পিতা ঈশ্বরকেও পায় না৷ কিন্তু য়ে পুত্রকে গ্রহণ করে, সে পিতা ঈশ্বরকেও পেয়েছে৷ 24 শুরু থেকে তোমরা যা শুনে আসছ, সেই সব বিষয় অবশ্যই তোমাদের অন্তরে রেখো৷ শুরু থেকে তোমরা যা শুনেছ তা যদি তোমাদের অন্তরে থাকে তবে তোমরা পিতা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের সাহচর্য়ে থাকবে৷ 25 আর ঈশ্বর এটাই আমাদের দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা হল অনন্ত জীবন৷ 26 যাঁরা তোমাদের ভুল পথে নিয়ে য়েতে চায় তাদের বিষয়ে তোমাদের এইসব কথা লিখলাম৷ 27 খ্রীষ্ট তোমাদের এক বিশেষ বরদান দিয়েছেন এবং তা তোমাদের মধ্যে রয়েছে৷ তাই তোমাদের অন্য কারোর শিক্ষার দরকার নেই৷ য়ে বরদান তোমরা পেয়েছ তা তোমাদের সব বিষয়ে শিক্ষা দেয়৷ এ বরদান সত্য, এর মধ্যে মিথ্যার লেশমাত্র নেই৷ তাই এই বরদান য়েমন শিক্ষা দিয়েছে, সেইমত তোমরা খ্রীষ্টে থাক৷ 28 এখন আমার স্নেহের সন্তানরা, খ্রীষ্টেতে থাক৷ তা করলে খ্রীষ্ট যখন প্রকাশিত হবেন তখন আমাদের আর ভয়ের কিছু থাকবে না৷ তিনি এলে তাঁর সামনে দাঁড়াতে ভয় বা লজ্জা পেতে হবে না৷ 29 যদি তোমরা জান য়ে খ্রীষ্ট ধার্মিক তাহলে তোমরা এও জান য়ে যাঁরা ধর্মাচরণ কাজ করে তারা ঈশ্বরের সন্তান৷
1 ভেবে দেখ, পিতা ঈশ্বর আমাদের কত ভালোই না বেসেছেন৷ যাতে আমরা ঈশ্বরের সন্তান বলে অভিহিত হই; বাস্তবিক আমরা তাই৷ জগতের লোক আমাদের চেনে না য়ে আমরা ঈশ্বরের সন্তান, কারণ তারা ঈশ্বরকে জানে না৷ 2 প্রিয় বন্ধুরা, এখন তো আমরা ঈশ্বরের সন্তান, আর ভবিষ্যতে আমরা আরো কি হব তা এখনও আমাদের কাছে প্রকাশ করা হয় নি৷ কিন্তু আমরা জানি য়ে যখন খ্রীষ্ট পুনরায় আসবেন তখন আমরা তাঁর সমরূপ হব, কারণ তিনি য়েমন আছেন, তাঁকে তেমনি দেখতে পাব৷ 3 খ্রীষ্ট শুদ্ধ আর তাঁর ওপরে য়ে সমস্ত লোক এই আশা রাখে, তারা খ্রীষ্টের মত নিজেদের শুদ্ধ করে৷ 4 য়ে কেউ পাপ করে, সে বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করে, আর ব্যবস্থা লঙঘন করাই পাপ৷ 5 তোমরা জান, মানুষের পাপ তুলে নেবার জন্যই খ্রীষ্ট প্রকাশিত হলেন; আর খ্রীষ্টের নিজের কোন পাপ নেই৷ 6 য়ে কেউ খ্রীষ্টে থাকে, সে পাপের জীবন-যাপন করে না৷ কেউ যদি পাপে জীবন-যাপন করে তবে সে খ্রীষ্টকে কখনও প্রকৃতভাবে উপলদ্ধি করে নি, এমন কি তাঁকে জানেও নি৷ 7 প্রিয় সন্তানরা, সতর্ক থেকো৷ কেউ য়েন তোমাদের বিপথে না নিয়ে যায়৷ য়ে কেউ যথার্থ কাজ করে সে নীতিপরায়ণ, ঠিক য়েমন খ্রীষ্ট নীতিপরায়ণ৷ 8 দিয়াবল সেই শুরু থেকেই পাপ করে চলেছে৷ য়ে ব্যক্তি পাপ করেই চলে সে দিয়াবলের৷ দিয়াবলের কাজকে ধ্বংস করার জন্যই ঈশ্বরের পুত্র প্রকাশিত হয়েছিলেন৷ 9 য়ে কেউ ঈশ্বরের সন্তান হয়, সে ক্রমাগত পাপ করতে পারে না, কারণ নরজীবনদাযী ঈশ্বরের শক্তি সেই ব্যক্তির মধ্যে থাকে৷ সে ঈশ্বরের সন্তানে পরিণত হয়েছে; তাই সে পাপে জীবন কাটাতে পারে না৷ 10 এভাবেই আমরা দেখতে পারি কারা ঈশ্বরের সন্তান আর কারাই বা দিয়াবলের সন্তান৷ যাঁরা সত্কর্ম করে না তারা ঈশ্বরের সন্তান নয়, আর য়ে তার ভাইকে ভালবাসে নাসে ঈশ্বরের সন্তান নয়৷ 11 তোমরা শুরু থেকে এই বার্তা শুনে আসছ, য়ে আমাদের পরস্পরকে ভালবাসা উচিত৷ 12 তোমরা কয়িনেরমতো হযো না৷ কযিন দিয়াবলের ছিল এবং তার ভাই হেবলকে হত্যা করেছিল৷ কিসের জন্য সে তার ভাইকে হত্যা করেছিল? কারণ কযিনের কাজগুলি ছিল মন্দ; কিন্তু তার ভাইয়ের কাজ ছিল ভাল৷ 13 ভাইরা, এই জগত যদি তোমাদের ঘৃণা করে তবে তাতে আশ্চর্য হযো না৷ 14 আমরা জানি য়ে আমরা মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছি৷ আমরা এটা জানি কারণ আমরা আমাদের ভাইদের ও বোনদের ভালবাসি৷ য়ে কেউ ভালবাসে না সে মৃত্যুর মধ্যেই থাকে৷ 15 য়ে কেউ তার ভাইকে ঘৃণা করে সে তো একজন খুনী; আর তোমরা জান কোন খুনী অনন্ত জীবনের অধিকারী হয় না৷ 16 তিনি আমাদের জন্য নিজের প্রাণ দিলেন, এর থেকেই আমরা জানতে পারি প্রকৃত ভালবাসা কি৷ সেইজন্য আমাদের ও আমাদের ভাই বোনদের জন্য প্রাণ দেওয়া উচিত৷ 17 যার পার্থিব সম্পদ রয়েছে, সে যদি তার কোন ভাইকে অভাবে পড়তে দেখে তাকে সাহায্য না করে, তবে কি করে বলা য়েতে পারে য়ে তার মধ্যে ঐশ্বরিক ভালবাসা আছে? 18 স্নেহের সন্তানরা, কেবল মুখে ভালবাসা না দেখিয়ে, এসো, আমরা কাজের মধ্য দিয়ে তাদের সত্যিকারের ভালবাসি৷ 19 এর দ্বারা আমরা জানব য়ে আমরা সত্যের৷ আমাদের অন্তর যদি আমাদের দোষী করে, তবুও ঈশ্বরের সামনে আমাদের বিবেক আশ্বস্ত থাকবে৷ কারণ আমাদের বিবেকের থেকে ঈশ্বর মহান, ঈশ্বর তো সবই জানেন৷ 20 21 প্রিয় বন্ধুরা, যদি আমাদের বিবেকগুলি আমাদের দোষের অনুভূতি না দেয় তবে ঈশ্বরের সামনে আমরা নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারব৷ 22 আর ঈশ্বরের কাছ থেকে যা কিছু চাই না কেন তা আমরা পাব, কারণ আমরা যা তাঁর সন্তোষজনক তাই করছি৷ 23 তাঁর আদেশ হল আমরা য়েন তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের নামে বিশ্বাস করি ও পরস্পরকে ভালবাসি৷ 24 য়ে ঈশ্বরের আদেশগুলি মান্য করে সে ঈশ্বরে থাকে; আর ঈশ্বর তার অন্তরে থাকেন৷ ঈশ্বর য়ে আমাদের অন্তরে আছেন তা আমরা কি করে জানব? য়ে আত্মাকে ঈশ্বর দিয়েছেন, সেই আত্মাই আমাদের বলছে য়ে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে আছেন৷
1 প্রিয় বন্ধুরা, সংসারে অনেক ভণ্ড ভাববাদী দেখা দিয়েছে, তাই তোমরা সব আত্মাকে বিশ্বাস করো না৷ কিন্তু সেই সব আত্মাদের যাচাই করে দেখ য়ে তারা ঈশ্বর হতে এসেছে কিনা৷ 2 এইভাবে তোমরা ঈশ্বরের আত্মাকে চিনতে পারবে৷ য়ে কোন আত্মা যীশু খ্রীষ্ট য়ে রক্ত মাংসের দেহ ধারণ করে এসেছেন বলে স্বীকার করে, সে ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে৷ 3 কিন্তু য়ে আত্মা, যীশুকে স্বীকার করে না, সে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি৷ এ সেই খ্রীষ্টারির আত্মা, খ্রীষ্টের শত্রু য়ে আসছে তা তোমরা শুনেছ, আর এখন সে তো সংসারে এসেই গেছে৷ 4 আমার স্নেহের সন্তানগণ, তোমরা ঈশ্বরের লোক, তাই তোমরা ওদের ওপর জযী হয়েছ; কারণ তোমাদের মধ্যে যিনি (ঈশ্বর) বাস করেন তিনি জগতের মধ্যে বাসকারী দিয়াবলের থেকে অনেক মহান৷ 5 এই ভণ্ড শিক্ষকরা হল জগতের, তাই তারা যা বলে তা সব জাগতিক কথাবার্তা, আর জগত তাদের কথা শোনে৷ 6 কিন্তু আমরা ঈশ্বরের লোক, ঈশ্বরকে য়ে জানে সে আমাদের কথা শোনে, য়ে ঈশ্বরের লোক নয় সে আমাদের কথা শোনে না৷ এইভাবেই আমরা সত্যের আত্মাকে ও ছলনার আত্মাকে চিনতে পারি৷ 7 প্রিয় বন্ধুরা, এস আমরা পরস্পরকে ভালবাসি, কারণ ঈশ্বরই ভালবাসার উত্স আর য়ে কেউ ভালবাসতে জানে সে ঈশ্বরের সন্তান, সে ঈশ্বরকে জানে৷ 8 য়ে ভালবাসতে জানে না, সে ঈশ্বরকে জানে না, কারণ ঈশ্বর স্বয়ং হলেন ভালবাসা৷ 9 ঈশ্বর আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা এইভাবেই দেখিয়েছেন, তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে এ জগতে পাঠালেন য়েন তাঁর মাধ্যমে আমরা জীবন লাভ করি৷ 10 ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালবাসা নয়, বরং আমাদের প্রতি ঈশ্বরের ভালবাসাই হল প্রকৃত ভালবাসা৷ ঈশ্বর আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত বলিরূপে তাঁর পুত্রকে পাঠিয়ে আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা প্রকাশ করেছেন৷ 11 প্রিয় বন্ধুরা, এইভাবে ঈশ্বর আমাদের ভালবেসেছেন, সুতরাং আমরাও অবশ্যই পরস্পরকে ভালবাসব৷ 12 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি৷ যদি আমরা পরস্পরকে ভালবাসি, তবে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে অবস্থান করেন; আর তাঁর ভালবাসা আমাদের মধ্যে পূর্ণতা লাভ করেছে৷ 13 আমরা জানি য়ে তিনি আমাদের মধ্যে আছেন; আর আমরা তাঁর মধ্যে অবস্থান করছি৷ এ বিষয় আমরা জানি, কারণ ঈশ্বর তাঁর আত্মাকে আমাদের দান করেছেন৷ 14 আমরা দেখেছি পিতা তাঁর পুত্রকে জগতের ত্রাণকর্তারূপে পাঠিয়েছেন৷ সেই বার্তাই আমরা লোকদের কাছে বলছি৷ 15 কেউ যদি স্বীকার করে য়ে, ‘যীশু ঈশ্বরের পুত্র,’ তবে ঈশ্বর তাঁর অন্তরে বাস করেন, আর সে ঈশ্বরেতে থাকে৷ 16 আমাদের জন্য ঈশ্বরের ভালবাসা আছে আমরা তা জানি ও বিশ্বাস করি৷ঈশ্বরই স্বয়ং ভালবাসা, আর য়ে কেউ ভালবাসায় থাকে সে ঈশ্বরের মধ্যে থাকে ও ঈশ্বর তার মধ্যে থাকেন৷ 17 যদি আমাদের ক্ষেত্রে ভালবাসা এই ভাবেই পূর্ণতা পায়, তবে শেষ বিচারের দিনে আমরা নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারব, কারণ এ জগতে আমরা খ্রীষ্টেরই মতো৷ 18 য়েখানে ঈশ্বরের ভালবাসা সেখানে ভয় থাকে না, পরিপূর্ণ ভালবাসা ভয়কে দূর করে দেয়, কারণ ভয়ের সঙ্গে শাস্তির চিন্তা জড়িত থাকে৷ য়ে ভয় পায় সে ভালবাসায় পূর্ণতা লাভ করে নি৷ 19 তিনিই (ঈশ্বর) আগে আমাদের ভালবেসেছেন, আর তার ফলে আমরা ভালবাসতে পারি৷ 20 যদি কেউ বলে, ‘সে ঈশ্বরকে ভালবাসে’ অথচ সে তার খ্রীষ্টেতে কোন ভাই ও বোনকে ঘৃণা করে তবে সে মিথ্যাবাদী৷ য়ে ভাইকে দেখতে পাচ্ছে, সে যদি তাকে ঘৃণা করে তবে য়াঁকে সে কোনও দিন চোখে দেখে নি, সেই ঈশ্বরকে সে ভালবাসতে পারে না৷ 21 কারণ ঈশ্বরের কাছ থেকে আমরা এই আদেশ পেয়েছি, ঈশ্বরকে য়ে ভালবাসে সে য়েন তার নিজের ভাইকেও ভালবাসে৷
1 যাঁরা বিশ্বাস করে য়ে যীশুই খ্রীষ্ট, তারা ঈশ্বরের সন্তান৷ য়ে কেউ পিতাকে ভালবাসে, সে তাঁর সন্তানদের ভালবাসে৷ 2 আমরা কি করে জানব য়ে আমরা ঈশ্বরের সন্তানদের ভালবাসি? আমরা জানি য়েহেতু আমরা ঈশ্বরকে ভালবাসি ও তাঁর সব আদেশ পালন করি৷ 3 ঈশ্বরকে ভালবাসার অর্থই হচ্ছে তাঁর আদেশ পালন করা; আর ঈশ্বরের আদেশ ভারী বোঝার মতো নয়৷ 4 কারণ প্রত্যেক ঈশ্বরজাত সন্তান জগতকে জয় করে৷ 5 আমাদের বিশ্বাসই আমাদের জগতজযী করেছে৷ কে জগতের ওপরে বিজযী হতে পারে? য়ে বিশ্বাস করে য়ে, যীশুই ঈশ্বরের পুত্র৷ 6 ইনিই যীশু খ্রীষ্ট, যিনি জগতে জল ও রক্তের মধ্য দিয়ে এসেছিলেন৷ আত্মাই বলছেন এই কথা সত্য, আর সেই আত্মা স্বয়ং সত্য৷ 7 যীশুর বিষয়ে তিনজন সাক্ষ্য দিচ্ছেন৷ 8 আত্মা, জল ও রক্ত আর সেই তিনের এক সাক্ষ্য৷ 9 লোকে যখন সত্য কিছু বলে আমরা তা বিশ্বাস করি, তবে ঈশ্বরের দেওয়া সাক্ষ্য এর থেকে কত না মূল্যবান৷ বস্তুত ঈশ্বর স্বয়ং আমাদের কাছে এই সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনি তাঁর নিজের পুত্রের বিষয়ে সত্য জানিয়েছেন৷ 10 ঈশ্বরের পুত্রকে য়ে বিশ্বাস করে ঐ সত্য তার অন্তরে থাকে৷ ঈশ্বরের কথায় য়ে বিশ্বাস করে না, সে তাঁকে মিথ্যাবাদী করেছে, কারণ ঈশ্বর তাঁর পুত্রের বিষয়ে য়ে কথা বলেছেন সে তাতে বিশ্বাস করে নি৷ 11 সেই সাক্ষ্য হচ্ছে, ঈশ্বর আমাদের অনন্ত জীবন দিয়েছেন এবং এই জীবন তাঁর পুত্রে আছে৷ 12 ঈশ্বরের পুত্রকে য়ে পেয়েছে সেই সত্য জীবন পেয়েছে৷ ঈশ্বরের পুত্রকে য়ে পায় নি সে জীবন পায় নি৷ 13 তোমরা যাঁরা ঈশ্বরের পুত্রের ওপর বিশ্বাস করেছ আমি তোমাদের কাছে এই কথা লিখছি য়েন তোমরা জানতে পার য়ে তোমরা অনন্ত জীবন পেয়েছ৷ 14 আমরা এবিষয়ে সুনিশ্চিত য়ে আমরা যদি তাঁর ইচ্ছানুসারে তাঁর কাছে কিছু চাই তবে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন; 15 আর আমরা যদি সত্যি জানি য়ে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন তবে জানতে হবে য়ে আমরা তাঁর কাছে যা চেয়েছি তা পেয়ে গিয়েছি৷ 16 যদি কেউ তার খ্রীষ্টান ভাইকে এমন কোন পাপ করতে দেখে যার পরিণতি অনন্ত মৃত্যু নয়, তবে সে তার ভাইয়ের জন্য প্রার্থনা করবে, আর ঈশ্বর তাকে জীবন দান করবেন৷ যাঁরা অনন্ত মৃত্যুজনক পাপ করে না, তিনি কেবল তাদেরই তা দেবেন৷ মৃত্যুজনক পাপ আছে, আর আমি তোমাদের সেরকম পাপ যাঁরা করে তাদের জন্য প্রার্থনা করতে বলছি না৷ 17 সমস্ত রকম অধার্মিকতাই পাপ; কিন্তু এমন পাপ আছে যার ফল অনন্ত মৃত্যু নয়৷ 18 আমরা জানি, ঈশ্বরের সন্তানরা পাপের জীবনযাপন করে না৷ ঈশ্বরের পুত্র তাদের রক্ষা করেনএবং পাপাত্মা তাদের কোনভাবে ক্ষতি করতে পারে না৷ 19 আমরা জানি য়ে আমরা ঈশ্বরের লোক; কিন্তু সমস্ত জগত রয়েছে পাপাত্মা শক্তির কবলে৷ 20 আমরা জানি য়ে ঈশ্বরের পুত্র এসেছেন, আর তিনি আমাদের সেই বোধ বুদ্ধি দিয়েছেন যার দ্বারা আমরা সেই সত্যময় ঈশ্বরকে জানতে পারি৷ এখন আমরা সত্য ঈশ্বরে আছি, কারণ আমরা তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টেতে আছি৷ তিনিই সত্য ঈশ্বর ও অনন্ত জীবন৷ 21 তাই স্নেহের সন্তানরা, তোমরা মিথ্যা দেবদেবীর কাছ থেকে দূরে থেকো৷
1 সেই প্রাচীন এই চিঠি ঈশ্বরের মনোনীত মহিলা ও তাঁর সন্তানদের কাছে লিখেছে৷ আমি তোমাদের সকলকে সত্যে ভালবাসি৷ কেবল আমি নই, যাঁরা সত্য কি জানে তারাও তোমাদের ভালবাসে৷ 2 সেই সত্য আমাদের অন্তরে আছে বলেই আমরা তোমাদের ভালবাসি৷ সেই সত্য আমাদের সঙ্গে চিরকাল থাকবে৷ 3 পিতা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ, দয়া ও শান্তি আমাদের সঙ্গে থাকবে৷ সত্য ও ভালবাসার মধ্য দিয়ে আমরা এই আশীর্বাদের অধিকারী হয়েছি৷ 4 তোমার সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ সত্য পথে চলছে ও পিতা আমাদের য়েমন আদেশ করেছেন সেই অনুসারে জীবনযাপন করছে দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি৷ 5 প্রিয় ভদ্রমহিলা, তোমার কাছে আমার অনুরোধ আমরা য়েন একে অপরকে ভালবাসি৷ এটা কোন নতুন আদেশ নয়৷ এই আদেশ তো আমরা শুরু থেকেই শুনে আসছি৷ 6 এবং এই ভালবাসার অর্থ হল, ঈশ্বর য়েমন আদেশ করেছেন সেইরকমভাবে জীবনযাপন করা৷ ঈশ্বরের আদেশ হল তোমরা ভালবাসায় ভরা জীবনযাপন কর৷ 7 এই জগতে অনেক ভণ্ড শিক্ষক তৈরী হয়েছে৷ যীশু খ্রীষ্ট য়ে মানব দেহে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন একথা তারা স্বীকার করে না৷ য়ে এইরকম করে, সে শিক্ষক হিসেবে ঠগ ও খ্রীষ্টারি৷ 8 তোমরা নিজেদের সম্পর্কে সাবধান হও! যাতে য়ে পুরস্কারের জন্য তোমরা কাজ করেছ তা থেকে তোমরা বঞ্চিত না হও৷ সতর্ক থেকো য়েন পুরো পুরস্কারটাই পেতে পারো৷ 9 কেবল খ্রীষ্টের শিক্ষারই অনুসরণ করা উচিত, যদি কেউ খ্রীষ্টের শিক্ষাকে পরিবর্তিত করে তবে সে ঈশ্বরকে পায় না; কিন্তু য়ে কেউ সেই শিক্ষানুসারে চলে সে পিতা ও পুত্র উভয়কেই পায়৷ 10 যদি কেউ যীশুর বিষয়ে এই সত্য শিক্ষা না নিয়ে তোমাদের কাছে শিক্ষা দিতে আসে, তবে তাকে বাড়িতে গ্রহণ করো না, কোন রকম শুভেচ্ছাও তাকে জানিও না৷ 11 কারণ য়ে তাকে শুভেচ্ছা জানায় সে তার দুষ্কর্মের ভাগী হয়৷ 12 যদিও তোমাদের কাছে লেখার অনেক বিষয়ই আমার ছিল, কিন্তু আমি কলম ও কালি ব্যবহার করতে চাই না৷ আমি আশা করছি তোমাদের কাছে যাব তাহলে আমরা একসাথে হয়ে অনেক কথা বলতে পারব, য়েন আমাদের আনন্দ সম্পূর্ণ হয়৷ 13 ঈশ্বরের মনোনীত তোমার বোনেরসন্তানেরা তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 14 15
1 আমার প্রিয় বন্ধু গায়েরকে, যাকে আমি সত্যে ভালবাসি, তার প্রতি এই প্রাচীনের পত্র৷ 2 প্রিয় বন্ধু, আমি জানি তুমি আত্মিকভাবে ভাল আছ; আর তাই আমি প্রার্থনা করি য়েন তোমার সবকিছু ভালভাবে চলে এবং তুমি সুস্থ থাক৷ 3 আমি খুব খুশী হলাম, কারণ আমাদের ভাইদের মধ্যে কয়েকজন এসে, তুমি য়ে সত্য ধরে রয়েছ ও য়ে সত্য পথে চলেছ সে বিষয়ে জানাল৷ 4 আমার সন্তানরা য়ে সত্যের পথে চলছে, এই খবর শুনে আমার য়ে আনন্দ হয়, এর থেকে বেশী আনন্দ আমার আর কিছুতে হয় না৷ 5 প্রিয় বন্ধু, আমাদের ভাইদের, এমন কি যাঁরা অপরিচিত, তাদের সকলকে তুমি য়ে সাহায্য করে থাক এ অতি উত্তম৷ 6 তাঁদের প্রতি তোমার ভালবাসার কথা তাঁরা এখানকার মণ্ডলীর সকলকে বলেছেন৷ তাঁদের যাত্রা পথে সাহায্য করলে তুমি ভালোই করবে৷ এমনভাবে সাহায্য করো য়েন ঈশ্বর খুশী হন, 7 কারণ তাঁরা খ্রীষ্টের পরিচর্য়ার উদ্দেশ্যেই যাত্রা শুরু করেছেন; আর তাঁরা এর জন্য যাঁরা খ্রীষ্ট বিশ্বাসী নয় তাদের কাছ থেকে কিছুই গ্রহণ করেন না৷ 8 তাই এই ধরণের লোকদের সাহায্য করতে আমরা বাধ্য, য়েন আমরা সত্যের পক্ষে সহকর্মীরূপে কাজ করি৷ 9 আমি মণ্ডলীকে চিঠি লিখলাম; কিন্তু সেই দিয়ত্রিফি য়ে তাদের নেতা হতে চায়, সে আমাদের কথা গ্রাহ্য় করে না৷ 10 এই কারণে আমি ওখানে গেলে সে কি করছে তা প্রকাশ করব৷ সে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাভাবে মন্দ কথা বলে, কিন্তু এতেও সে খুশী নয়৷ এছাড়া ভাইদের সে স্বাগত জানাতে অস্বীকার করে৷ এমনকি যাঁরা সেই ভাইদের সাহায্য করতে চায়, দিয়ত্রিফি তাদের সাহায্য করতে দেয় না, বরং তাদের মণ্ডলী থেকে বাইরে বের করে দেয়৷ 11 প্রিয় বন্ধু, যা কিছু মন্দ তার অনুকরণ করো না, কিন্তু যা কিছু ভাল তার অনুকরণ করো৷ য়ে ভাল কাজ করে সে ঈশ্বরের লোক, য়ে মন্দ কাজ করে সে ঈশ্বরকে দেখে নি৷ 12 সকলেই দীমীত্রিয়ের উচ্চ প্রশংসা করে, এমনকি সত্যও তার সাক্ষী, আমরাও সেই একই কথা বলব৷ তুমি জান য়ে আমরা যা বলি তা সত্য৷ 13 তোমাকে লেখবার অনেক কথাই আমার ছিল; কিন্তু কালি কলমে তা লিখতে ইচ্ছা করে না৷ 14 আশা করি শিগ্গিরই তোমাকে দেখব, তখন আমরা সামনা-সামনি কথাবার্তা বলব৷ 15 তোমার শান্তি হোক্৷ তোমার সব বন্ধুরা তোমায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ আমাদের বন্ধুদের প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানিও৷
1 আমি যিহূদা, যীশু খ্রীষ্টের দাস এবং যাকোবের ভাই, এই চিঠি তাদের উদ্দেশ্যে লিখছি যাদের ঈশ্বর আহ্বান করেছেন৷ পিতা ঈশ্বর তোমাদের ভালোবাসেন এবং যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা তোমাদের রক্ষা করেন৷ 2 ঈশ্বর তাঁর দয়া, শান্তি এবং প্রেম আরো অধিক পরিমাণে তোমাদের জীবনে দান করুন৷ 3 প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের সকলের জন্য য়ে পরিত্রাণের ব্যবস্থা রয়েছে তারই বিষয়ে আমি তোমাদের কিছু লিখতে আগ্রহী ছিলাম৷ কিন্তু তবু একবার য়ে বিশ্বাস তোমরা লাভ করেছ, বা চিরদিনের জন্য উত্তম, যা ঈশ্বর তাঁর পবিত্র লোকদের দিয়েছেন, তার পক্ষে য়েন তোমরা প্রাণপণে যুদ্ধ কর সেই বিষয়ে উত্সাহ দেবার জন্য তোমাদের কাছে লেখা দরকার বলে আমি মনে করলাম৷ 4 কারণ এমন কিছু লোক গোপনে তোমাদের দলে ঢুকে পড়েছে যাদের সম্বন্ধে বহুপূর্বেই শাস্ত্রে দণ্ডাজ্ঞার কথা লেখা হয়েছে৷ এই অধার্মিক লোকেরা ঈশ্বরের অনুগ্রহকে তাদের অনৈতিক কাজকর্মের অজুহাতে পরিণত করেছে; আর যীশু খ্রীষ্ট য়ে আমাদের একমাত্র কর্তা ও প্রভু তা এরা অস্বীকার করে৷ 5 আমি তোমাদের কিছু কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যদিও তোমরা সকলেই এসব বিষয় জান, তবু বলব প্রভু মিশর দেশ থেকে তাঁর প্রজাদের উদ্ধার করে পরে যাঁরা অবিশ্বাসী তাদের সকলকে ধ্বংস করেছিলেন৷ 6 আমি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, য়ে সেই স্বর্গদূতরা যাঁরা নিজেদের আধিপত্য রক্ষা না করে নিজ বাসস্থান ত্যাগ করেছিল, তাদের তিনি (ঈশ্বর) ঘোর অন্ধকার কারাগারে অনন্তকালীন শেকলে বেঁধে রেখেছেন আর মহাবিচারের দিনে তাদের বিচার করা হবে৷ 7 সদোম, ঘমোরা ও তাদের আশেপাশের নগরগুলির কথা ভুলে য়েও না৷ এই স্বর্গদূতদের মতো তারাও নীতিহীন য়ৌনতায় প্রবৃত্ত হত এবং অস্বাভাবিক য়ৌনসংসর্গে লিপ্ত হত৷ অনন্ত আগুনে শাস্তি ভোগ করে তারা আমাদের সামনে দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে রয়েছে৷ 8 একইভাবে এই লোকরা, যাঁরা তোমাদের দলে এসেছে, তারা নিজেদের স্বপ্ন দ্বারা চালিত হয় এবং নিজেদের দেহকে পাপে কলুষিত করে৷ তারা প্রভুর কর্তৃত্ত্ব (নিয়ম) অগ্রাহ্য করে আর যাঁরা সম্মানীয় ব্যক্তি তাদের নিন্দা করে৷ 9 কিন্তু প্রধান স্বর্গদূত মীখায়েলের কথা আমরা জানি, যখন তিনি মোশির দেহ নিয়ে দিয়াবলের সঙ্গে তর্ক করছিলেন তখন তিনি দিয়াবলকে কোন কটু কথা বলতে সাহস করেন নি, তার পরিবর্তে শুধু বলেছিলেন, ‘প্রভু তোমাকে তিরস্কার করুন৷’ 10 কিন্তু এই লোকরা য়ে সব বিষয় বোঝে না তারই নিন্দা করে; আর চিন্তা দ্বারা নয় বরং তাদের স্বাভাবিক অনুভূতির দ্বারা যা বোঝে, যুক্তিবিহীন পশুদের মত তাই করে নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনে৷ 11 তাদের ধিক্, কারণ কয়িন য়ে পথে গিয়েছিল তারাও সেই পথ ধরেছে৷ তারা বিলিয়মের মতো টাকার লোভে ভ্রান্ত পথে চলেছে৷ আর কোরহের মতো বিদ্রোহী হয়ে ধ্বংসের পথে চলেছে৷ 12 এইসব লোকরা তোমাদের প্রেমভোজে ময়লা দাগের মতো৷ কোন ভয় না করে তারা তোমাদের সঙ্গে ভোজ খায় এবং কেবল নিজেদের কথাই ভাবে৷ তারা হাওয়ায় ভেসে যাওয়া বৃষ্টিহীন মেঘের মতো, ফলনের ঋতুতে ফলহীন বলে শেকড় সমেত উপড়ে ফেলা গাছের মতো; সুতরাং তারা দুই বার মৃত৷ 13 তাদের লজ্জাজনক কাজ উত্তাল সমুদ্রে তৈরী ছড়িয়ে যাওয়া ফেনার মতো৷ ঐ লোকগুলি আকাশে ইতস্ততঃ ভ্রমণরত তারার মতো৷ ঘনতম অন্ধকারের মধ্যে তাদের জন্য এক অনন্তকালীন স্থান রয়েছে৷ 14 আদমের থেকে সপ্তম পুরুষ য়ে হনোক, তিনিও এই লোকদের সম্বন্ধে ভাববাণী করেছেন: ‘দেখ তাঁর লক্ষ লক্ষ পবিত্র স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে প্রভু আসছেন৷ 15 তিনি সকলের বিচার করার জন্য এবং সকলকে তাদের কৃত সকল অধার্মিক কাজকর্মের জন্য শাস্তি দিতে আসছেন৷ এইসব অধার্মিক পাপী তাঁর বিরুদ্ধে যত সব উদ্ধত কথাবার্তা বলেছে সেই কারণে তাদের দোষী ঘোষণা করার জন্য আসছেন৷’ 16 তারা সব সময় অভিযোগ ও নিন্দা করে, তাদের নিজেদের অভিলাষ অনুসারে চলে৷ নিজেদের বিষয়ে গর্ব করে এবং লাভের আশায় তারা অন্যদের তোষামোদ করে৷ 17 প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিতেরা যা বলে গেছেন তা মনে রেখো৷ 18 তারা তো তোমাদের বলতেন, ‘শেষের সময় এমন সব উপহাসকরা উঠবে যাঁরা নিজেদের ইচ্ছানুযাযী ঈশ্বর-বিরুদ্ধ কাজ করবে৷’ 19 এই লোকরাই তোমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে৷ তারা তাদের পাপ প্রবৃত্তির দাস৷ তাদের সেই আত্মা নেই৷ 20 কিন্তু প্রিয় বন্ধু, তোমরা নিজেদের পরম পবিত্র বিশ্বাসের ওপর গেঁথে তোল৷ পবিত্র আত্মাতে প্রার্থনা কর৷ 21 নিজেদের ঈশ্বরের প্রেমে রাখ; আর অনন্ত জীবনের জন্য আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দয়া লাভের অপেক্ষায় থাক৷ 22 যাদের মনে সন্দেহ আছে, এমন লোকদের সাহায্য কর৷ 23 নরকের আগুন থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের পরিত্রাণ দ্বারা রক্ষা কর৷ অন্যদের প্রতি সতর্কভাবে করুণা প্রদর্শন কর; কিন্তু পাপের দ্বারা কলঙ্কিত তাদের বস্ত্রকে ঘৃণা কর৷ 24 ঈশ্বর শক্তিশালী, তিনি তোমাদের পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবেন; আর নিজের মহিমার সামনে নির্দোষ অবস্থায় আনন্দের সঙ্গে তোমাদের উপস্থিত করতে তিনি সক্ষম৷ 25 তিনিই একমাত্র ঈশ্বর, আমাদের উদ্ধারকর্তা৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা তাঁরই প্রতাপ, মহিমা, পরাক্রম ও কর্তৃত্ত্ব যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে অবিচল থাকুক্৷ আমেন৷
1 এই হল যীশু খ্রীষ্টের বাক্য৷ য়েসব ঘটনা খুব শীঘ্রই ঘটবে তা তাঁর দাসদের দেখানোর জন্য ঈশ্বর যীশুকে তা দিয়েছিলেন; আর খ্রীষ্ট তাঁর স্বর্গদূতকে পাঠিয়ে তাঁর দাস য়োহনকে তা জানালেন৷ 2 য়োহন যা যা দেখেছিলেন সে সব বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন৷ এ হল সেই সত্য যা যীশু খ্রীষ্ট তাঁর কাছে বলেছিলেন - যা কেবলমাত্র ঈশ্বরের বার্তা৷ 3 ধন্য সেইজন, য়ে এই বার্তার বাক্যগুলি পাঠ করে এবং যাঁরা তা শোনে ও তাতে লিখিত নির্দেশগুলি পালন করে তারাও ধন্য, কারণ সময় সন্নিকট৷ 4 এশিয়া প্রদেশেরসাতটি খ্রীষ্ট মণ্ডলীর কাছে আমি য়োহন লিখছি৷ঈশ্বর যিনি আছেন, যিনি ছিলেন ও যিনি আসছেন এবং তাঁর সিংহাসনের সম্মুখবর্তী সপ্ত আত্মা 5 ও যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের মধ্যে নেমে আসুক৷ বিশ্বস্ত সাক্ষী যীশু, যিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিতদের মধ্যে প্রথম এবং এই পৃথিবীর রাজাদের শাসনকর্তা, তিনি আমাদের ভালবাসেন এবং নিজের রক্ত দিয়ে আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করেছেন৷ 6 যীশু আমাদের নিয়ে এক রাজ্য গড়েছেন এবং তাঁর পিতা ঈশ্বরের সেবার জন্য আমাদের যাজক করেছেন৷ যীশুর মহিমা ও পরাক্রম যুগে যুগে স্থাযী হোক্৷ আমেন৷ 7 দেখ, যীশু মেঘ সহকারে আসছেন৷ আর প্রত্যেকে তাঁকে দেখতে পাবে, এমনকি যাঁরা তাঁকে বর্শাদিয়ে বিদ্ধ করেছিল, তারাও দেখতে পাবে৷ তখন পৃথিবীর সকল লোক তাঁর জন্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়বে৷ হ্যাঁ, তাই ঘটবে! আমেন৷ 8 প্রভু ঈশ্বর বলেন, ‘আমিই আল্ফা ও ওমিগা;আমিই সেই সর্বশক্তিমান৷ আমিই সেই জন যিনি আছেন, যিনি ছিলেন এবং যিনি আসছেন৷’ 9 আমি য়োহন, খ্রীষ্টেতে তোমাদের ভাই৷ আমরা একসাথে যীশুতে রয়েছি: আমরা কষ্ট, রাজ্য, ও ধৈর্য্য সহ্য করায় সহভাগী৷ আমি পাটম্দ্বীপে ছিলাম কারণ আমি ঈশ্বরের বাক্য এবং যীশুর প্রকাশিত সত্য প্রচার করেছিলাম৷ 10 আমি প্রভুর দিনে আত্মাবিষ্ট হলাম; আর পেছন থেকে এক উচ্চস্বর শুনতে পেলাম৷ মনে হল তূরীধ্বনি হচ্ছে৷ 11 ঘোষিত হল, ‘তুমি যা দেখছ তা একটি পুস্তকে লেখ, আর ইফিষ, স্মুর্ণা, পর্গাম, থুয়াতীরা, সার্দ্দি, ফিলাদিলফিয়া ও লায়দিকেয়া এই সাতটি মণ্ডলীর কাছে তা পাঠিয়ে দাও৷’ 12 আমার সঙ্গে কে কথা বলছেন তা দেখার জন্য আমি পেছন ফিরে তাকালাম এবং দেখলাম, সাতটি সুবর্ণ দীপাধার৷ 13 সেই দীপাধারগুলির মাঝখানে দাঁড়িয়ে, ‘মানবপুত্রের মতন একজন৷’ পরণে তাঁর লম্বা পোশাক, আর বুকে জড়ানো সোনালী কটিবন্ধ৷ 14 তাঁর মাথা ও চুল ছিল পশমের মত - য়ে পশম তুষারের মত শুভ্র; তাঁর চোখ ছিল আগুনের শিখার মতো৷ 15 তাঁর পা য়েন আগুনে পোড়ানো উজ্জ্বল পিতল, বন্যার জল কল্লোলের মতো তাঁর কন্ঠস্বর৷ 16 তাঁর ডান হাতে সাতটি তারা, তাঁর মুখ থেকে নিঃসৃত হচ্ছিল এক তীক্ষ্ণ দ্বিধারযুক্ত তরবারি৷ পূর্ণ তেজে জ্বলন্ত সূর্যের মত তাঁর রূপ৷ 17 তাঁকে দেখে আমি মুর্চ্ছিত হয়ে তাঁর চরণে লুটিয়ে পড়লাম৷ তখন তিনি আমার গায়ে তাঁর ডান হাত রেখে বললেন, ‘ভয় করো না! আমি প্রথম ও শেষ৷ 18 আমি সেই চির জীবন্ত, আমি মরেছিলাম, আর দেখ আমি চিরকাল যুগে যুগে জীবিত আছি৷ মৃত্যু ও পাতালেরচাবিগুলি আমি ধরে আছি৷ 19 তাই তুমি যা যা দেখলে, যা যা এখন ঘটছে আর এরপর যা ঘটবে তা লিখে নাও৷ 20 আমার ডানহাতে য়ে সাতটি তারা ও সাতটি সুবর্ণ দীপাধার দেখলে তাদের গুপ্ত অর্থ হচ্ছে এই-সাতটি তারা ঐ সাতটি মণ্ডলীর স্বর্গদূত আর সেই সাতটি দীপাধারের অর্থ সেই সাতটি মণ্ডলী৷
1 ‘ইফিষে মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের উদ্দেশ্যে লেখ: ‘যিনি তাঁর ডান হাতে সাতটি তারা ধরে থাকেন আর যিনি সাতটি সুবর্ণ দীপাধারের মাঝে যাতায়াত করেন তিনি বলছেন: 2 আমি জানি তুমি কি করেছ৷ তুমি কঠোর পরিশ্রম করেছ, ধৈর্য় সহকারে সহ্য করেছ৷ তুমি য়ে দুষ্ট লোকদের সহ্য করতে পার না তাও আমি জানি৷ যাঁরা প্রেরিত নয় অথচ নিজেদের প্রেরিত বলে দাবী করে তুমি তাদের পরীক্ষা করেছ, আর তারা য়ে মিথ্যাবাদী তা জেনেছ৷ 3 আমি জানি তোমার ধৈর্য্য আছে; আর আমার নামের জন্য দুঃখকষ্ট সহ্য করেছ, ক্লান্ত হয়ে পড়ো নি৷ 4 ‘তবু তোমার বিরুদ্ধে আমার এই অভিযোগ আছে; তোমার য়ে ভালবাসা প্রথমে ছিল তা তুমি হারিয়ে ফেলেছ৷ 5 তাই তুমি চিন্তা করে দেখ কোথা থেকে তোমার পতন হয়েছে৷ অনুতাপ কর, আর শুরুতে য়েসব কাজ করতে তাতে ফিরে যাও৷ তুমি যদি অনুতাপ না কর তবে আমি তোমার কাছে আসব ও তোমার দীপাধারটি তার স্থান থেকে সরিয়ে দেব৷ 6 কিন্তু একটি গুণ তোমার আছে, তুমি নীকলায়তীয়দেরকাজ ঘৃণা কর, তাদের কাজ আমিও ঘৃণা করি৷ 7 যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন৷ য়ে বিজযী হয় আমি তাকে জীবন বৃক্ষের ফল খাওয়ার অধিকার দেব৷ এই বৃক্ষ রয়েছে ঈশ্বরের বাগানে৷ 8 ‘স্মুর্ণার মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের কাছে এই কথা লেখ: ‘যিনি আদি ও অন্ত, যিনি মরেছিলেন এবং পুনরায় জীবিত হলেন, তিনি এই কথা বলছেন৷ 9 আমি তোমার দুঃখভোগ ও দারিদ্র্যের কথা জানি; কিন্তু সত্যি তুমি ধনবান! তোমাদের নামে লোকে য়ে সব মন্দ কথা বলে তা আমি জানি৷ সেই সব লোক নিজেদের ইহুদী বলে কিন্তু সত্যিকারের ইহুদী নয়, বরং শয়তানের দলের লোক৷ 10 তোমাকে য়ে সমস্ত দুঃখভোগ করতে হবে তাতে ভয় পেও না৷ আমি তোমাকে বলছি তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য দিয়াবল তোমাদের কাউকে কাউকে কারাগারে পুরবে৷ দশ দিন পর্যন্ত তোমাদের কষ্ট হবে৷ যদি মরতে হয় তবু আমার প্রতি বিশ্বস্ত থেকো৷ যদি তুমি বিশ্বস্ত থাক তাহলে আমি তোমাকে জীবন-মুকুট দেব৷ 11 ‘আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক৷ য়ে জযী হয়, সে দ্বিতীয় মৃত্যুর দ্বারা আঘাত পাবে না৷ 12 ‘পর্গাম মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের কাছে লেখ:‘য়াঁর হাতে তীক্ষ্ন দ্বিধার তরোয়াল তিনি বলেন: 13 আমি জানি তুমি কোথায় বাস করছ৷ তুমি সেইখানে বাস করছ, য়েখানে শয়তানের সিংহাসন রয়েছে৷ কিন্তু আমার প্রতি তুমি বিশ্বস্ত আছ৷ এমনকি আন্তিপাসের সময়ও আমার প্রতি তোমার য়ে বিশ্বাস তা অস্বীকার কর নি৷ আন্তিপাস আমার এক বিশ্বস্ত সাক্ষী, য়ে তোমাদের নগরে নিহত হয়েছিল৷ তোমাদের নগর সেইখানে য়েখানে শয়তান বাস করে৷ 14 ‘তবু তোমাদের বিরুদ্ধে আমার কয়েকটি কথা বলার আছে৷ তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোককে তুমি সহ্য করেছ যাঁরা বিলিয়মের শিক্ষা অনুসারে চলে৷ ইস্রায়েলকে কি করে পাপে ফেলা যায় তা বিলিয়ম শিখিয়েছিল৷ সেই লোকরা প্রতিমার সামনে উত্সর্গ করা খাদ্য় খেয়ে ও ব্যভিচার করে পাপ করেছিল৷ 15 হ্যাঁ, তোমাদের মধ্যেও বেশ কিছু লোক নীকলায়তীয়দের শিক্ষা অনুসারে চলে৷ 16 তাই বলি, তুমি মন ফিরাও না হলে আমি শিগ্গির তোমার কাছে আসব; আর আমার মুখের তরবারি দিয়ে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব৷ 17 ‘আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক৷‘য়ে জীবনে জযী হয়, তাকে আমি গুপ্ত মান্নার অংশ খেতে দেব এবং আমি তাদের প্রত্যেককে একটি করে সাদা পাথর দেব৷ সেই পাথরের ওপর একটা নতুন নাম লেখা আছে; যা অন্য কেউ জানতে পারবে না, কেবল য়ে তা পাবে সেই জানতে পারবে৷’ 18 ‘থুয়াতীরাস্থ মণ্ডলীর স্বর্গদূতের কাছে এই কথা লেখ:‘যিনি ঈশ্বরের পুত্র; য়াঁর চোখ আগুনের শিখার মতো ও য়াঁর পা উজ্জ্বল পিতলের মতো, তিনি এই কথা বলছেন: 19 আমি তোমার বিশ্বাস, প্রেম, পরিচর্য়া ও ধৈর্য়ের বিষয় জানি৷ প্রথমে তুমি যা করেছিলে তার থেকে এখন য়ে আরও বেশী কাজ করছ তাও আমি জানি৷ 20 তবু তোমার বিরুদ্ধে এই আমার অভিযোগ, - ঈষেবল নামে সেই স্ত্রীলোককে তুমি তার ইচ্ছামতো চলতে দিচ্ছ৷ সে নিজেকে ভাববাদিনী বলে৷ সে আমার লোকদের শিক্ষা দিয়ে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে৷ ঈষেবল আমার লোকদের ব্যভিচার করতে ও প্রতিমার কাছে উত্সর্গ করা বলির মাংস খেতে প্রলোভিত করছে৷ 21 আমি তাকে মন ফেরাবার জন্য সময় দিয়েছিলাম; কিন্তু সে তার ব্যভিচারের জন্য অনুতাপ করতে চায় না৷ 22 তাই আমি তাকে রোগশয্যায় ফেলব; আর যাঁরা তার সঙ্গে ব্যভিচার করছে, তারা যদি তার সঙ্গে করা পাপ কাজের জন্য অনুতাপ না করে তবে তাদেরও মহাকষ্টের মধ্যে ফেলব৷ 23 আমি তার সন্তানদের ওপর মহামারী এনে তাদের মেরে ফেলব, তাতে সমস্ত মণ্ডলী জানতে পারবে, আমিই একজন য়ে সমস্ত লোকের মন ও হৃদয় সকল জানি৷ তোমরা প্রত্যেকে যা করেছ তার প্রতিফল আমি তোমাদের প্রত্যেককে দেব৷ 24 ‘থুয়াতীরাতে বাকী লোক, তোমরা যাঁরা তার এই ভুল শিক্ষার অনুসারী হও নি, লোকে যাকে শয়তানের নিগূঢ়তত্ত্ব বলে, তা যাঁরা শেখে নি, সেই তোমাদের ওপর অন্য কোন ভার চাপিয়ে দিচ্ছি না৷ কেবল এইটুকু বলি 25 যা তোমাদের আছে, তা আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত শক্ত করে ধরে থাক৷ 26 ‘আর য়ে জয় করে ও শেষ পর্যন্ত আমার ইচ্ছা অনুসারে চলে তাকে আমি আমার সমস্ত জাতির ওপরে কর্তৃত্ত্ব করতে অধিকার দেব৷ 27 ‘তাতে সে লৌহদণ্ডের দ্বারা তাদের শাসন করবে৷ মাটির পাত্র ভাঙ্গার মতো সে তাদের ভেঙ্গে চুরমার করবে৷’গীতসংহিতা 2:9 28 পিতার কাছ থেকে আমি তেমন ক্ষমতাই পেয়েছি, আমি তাকে ভোরের তারাও দেব৷ 29 আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন, যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক৷
1 ‘সার্দ্দিস্থ মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের কাছে এই কথা লেখ: ‘ঈশ্বরের সপ্ত আত্মা ও সপ্ত তারা যার আছে তিনি বলেন: আমি জানি তোমার সব কাজের কথা৷ লোকেরা বলে তুমি নাকি জীবন্ত, কিন্তু বাস্তবে তুমি মৃত! 2 এখন জাগো৷ য়েটুকু বাকি বিষয় মৃতকল্প হল তাকে শক্তিশালী কর; কারণ তোমার কোন কাজ আমার ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সিদ্ধ বলে দেখিনি৷ 3 তাই য়ে শিক্ষা তুমি পেয়েছ ও শুনেছ তা মনে রেখো এবং তার বাধ্য হও৷ তোমার মন-ফিরাও! তুমি যদি সচেতন না হও, তবে চোর য়েমন আসে সেইরকম হঠাত্ আমি তোমার কাছে এসে হাজির হব; কোন সময় য়ে আমি আসব তা তুমি জানতেও পারবে না৷ 4 যাই হোক, সার্দ্দিতে তবু এমন কিছু লোক তোমার দলে আছে যাঁরা তাদের বস্ত্র কলুষিত করে নি, তারা শুভ্র বস্ত্র পরে আমার সঙ্গে চলাফেরা করবে, কারণ তারা তার য়োগ্য৷ 5 য়ে জযী হয়, সে ঐরকম শুভ্র পোশাক পরবে; আর আমি কোন মতেই তার নাম জীবন পুস্তক থেকে মুছে ফেলব না, আমি স্বীকার করব য়ে সে আমার৷ আমার পিতার সামনে ও তাঁর স্বর্গদূতদের সামনে আমি একথা বলব৷ 6 আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক৷ 7 ‘ফিলাদিল্ফিয়ার মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের কাছে লেখ: ‘যিনি পবিত্র ও যিনি সত্য তিনি তোমায় একথা বলছেন৷ তাঁর কাছে দাযূদের চাবি আছে; তিনি খুললে কেউ তা বন্ধ করতে পারে না বা বন্ধ করলে কেউ তা খুলতে পারে না৷ তিনিই একথা বলছেন: 8 আমি তোমার সব কাজের কথা জানি৷ শোন, আমি তোমার সামনে একটি খোলা দরজা রাখছি, এই দরজা কেউ বন্ধ করতে পারে না৷ আমি জানি যদিও তুমি দুর্বল, তবু তুমি আমার শিক্ষা অনুসারে চলেছ, আর তুমি আমার নাম অস্বীকার কর নি৷ 9 শোন! শয়তানের দলের য়ে লোকেরা ইহুদী না হয়েও মিথ্যাভাবে নিজেদের ইহুদী বলে তাদের আমি তোমার পায়ের সামনে নিয়ে এসে প্রণাম করাব৷ আমি তাদের জানাবো য়ে আমি তোমাকে ভালবেসেছি৷ 10 কারণ ধৈর্য় সহকারে সহ্য করবার য়ে আদেশ আমি দিয়েছিলাম তা তুমি পালন করেছ৷ এই পৃথিবীবাসী লোকদের পরীক্ষার্থে সমস্ত জগতের ওপর য়ে মহাকষ্ট ঘনিয়ে আসছে, আমি তোমাকে সেই পরীক্ষার সময় নিরাপদেই রাখব৷ পৃথিবীর লোকদের পরীক্ষার জন্যই এই মহাকষ্ট আসবে৷ 11 ‘আমি শিগ্গির আসছি৷ তোমার যা আছে তা ধরে রাখ, য়েমন চলছ তেমনি চলতে থাক, য়েন কেউ তোমার বিজয়মুকুট কেড়ে নিতে না পারে৷ 12 য়ে বিজযী হয় তাকে আমি আমার ঈশ্বরের মন্দিরে একটি স্তন্ভ করব, আর তাকে কখনও সেই মন্দির থেকে বাইরে য়েতে হবে না৷ তার ওপর আমি আমার ঈশ্বরের নাম আর আমার ঈশ্বরের নগরের নাম লিখব৷ সেই নগর হল নতুন জেরুশালেম৷ সেই নগর ঈশ্বরের কাছ থেকে স্বর্গ হতে নেমে আসছে৷ আমার নতুন নামও আমি তার ওপর লিখে দেব৷ 13 আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক৷ 14 ‘লায়দিকেয়াস্থ মণ্ডলীর স্বর্গদূতের কাছে এই কথা লেখ:‘যিনি আমেন,যিনি বিশ্বস্ত ও সত্যসাক্ষী, যিনি ঈশ্বরের সৃষ্টির উত্স তিনি বলেন: 15 আমি জানি তুমি কি করছ, তুমি না ঠাণ্ডা না গরম; তুমি হয় ঠাণ্ডা নয় গরম হলেই ভাল হত৷ 16 তোমার অবস্থা ঈষদুষ্ণ, না ঠাণ্ডা না গরম, তাই আমার মুখ থেকে তোমাকে আমি থু থু করে ফেলে দেব৷ 17 তুমি বল, ‘আমি ধনবান, আমি ধনসঞ্চয় করেছি, আমার কিছুরই অভাব নেই,’ কিন্তু জান না য়ে তুমি দুর্দশাগ্রস্থ, করুণার পাত্র, দরিদ্র, অন্ধ ও উলঙ্গ৷ 18 আমি তোমাকে এক পরামর্শ দিই, তুমি আমার কাছ থেকে আগুনে নিখাদ করা খাঁটি সোনা কেনো, য়েন প্রকৃত ধনবান হতে পার৷ আমি তোমাকে বলছি আমার কাছ থেকে সাদা পোশাক কেনো, য়েন তোমার লজ্জাজনক উলঙ্গতা ঢাকা পড়ে৷ আমি তোমাকে চোখে দেখার জন্য মলম কিনতে বলি, তাহলে তুমি ঠিক দেখতে পাবে৷ 19 ‘আমি যত লোককে ভালবাসি তাদের সংশোধন ও শাসন করি৷ তাই উদ্য়োগী হও ও মন-ফেরাও৷ 20 দেখ, দরজাতে দাঁড়িয়ে আমি যা দিই৷ কেউ যদি আমার গলা শুনে দরজা খুলে দেয়, তবে আমি তার ঘরের ভেতরে যাব ও তার সঙ্গে আহারে বসব, আর সেও আমার সঙ্গে আহার করবে৷ 21 আমি জযী হয়ে য়েমন আমার পিতার সঙ্গে তাঁর সিংহাসনে বসেছি, সেইরূপ য়ে জযী হয়, তাকেও আমি আমার সাথে আমার সিংহাসনে বসতে দেব৷ 22 আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন, যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক৷’
1 এরপর আমি একটি দর্শন পেলাম; আর দেখতে পেলাম আমার সামনে স্বর্গে একটা দরজা খোলা রয়েছে৷ এর আগে য়ে কন্ঠস্বর আমার সঙ্গে কথা বলেছিল, সেই একই স্বর আর তূরীর আওয়াজ শুনতে পেলাম, তা আমাকে বলছে, ‘এখানে উঠে এস, এরপর যা কিছু অবশ্যই ঘটবে তা আমি তোমাকে দেখাব৷’ 2 মুহূর্তের মধ্যে আমি আত্মাবিষ্ট হলাম, আমার সামনে স্বর্গে এক সিংহাসন ছিল, সেই সিংহাসনের ওপর একজন বসেছিলেন৷ 3 যিনি সেখানে বসেছিলেন, তাঁর দেহ সূর্য়কান্ত ও সার্দীয় মণির মত অত্য়ুজ্জ্বল৷ সেই সিংহাসনের চারদিকে পান্নার মতো ঝলমলে মেঘধনুক ছিল৷ 4 সেই সিংহাসনের চারদিকে চব্বিশটি সিংহাসন ছিল৷ সেইসব সিংহাসনে চব্বিশ জন প্রাচীনবসেছিলেন, তাঁরা সকলে শুভ্র পোশাক পরেছিলেন; আর তাঁদের মাথায় সোনার মুকুট ছিল৷ 5 সেই সিংহাসন থেকে বিদ্যুতের ঝলকানি, গুরু গুরু শব্দ ও বজ্রধ্বনি নির্গত হচ্ছিল; আর সেই সিংহাসনের সামনে সাতটি মশাল জ্বলছিল৷ সাতটি আগুনের মশাল ঈশ্বরের সেই সপ্ত আত্মার প্রতীক; 6 আর সেই সিংহাসনের সামনে ছিল কাঁচের মতো সমুদ্র, যা স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ৷সিংহাসনের সামনে এবং সিংহাসনের চারদিকে চারজন প্রাণী ছিল যাদের সামনে ও পেছনে সর্বাঙ্গ চোখে ভরা ছিল৷ 7 প্রথম প্রাণীটি দেখতে সিংহের মতো, দ্বিতীয় প্রাণীটি ষাঁড়ের মতো, তৃতীয় প্রাণীটির মুখ মানুষের মুখের মতো৷ চতুর্থ প্রাণীটি উড়ন্ত ঈগলের মতো৷ 8 এই চারটি প্রাণীর প্রত্যেকের ছটি করে পাখা ছিল, সেই প্রাণীগুলির সর্বাঙ্গে, ভেতরে ও বাইরে ছিল চোখ, আর তাঁরা দিন-রাত সব সময় বিরত না হয়ে এই কথা বলছিলেন:‘পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, যিনি ছিলেন, যিনি আছেন ও যিনি আসছেন৷’ 9 যিনি সিংহাসনে বসে আছেন সেই জীবন্ত প্রাণীরা তাঁর মহিমা, সম্মান ও ধন্যবাদ কীর্তন করেন৷ ইনি হলেন সেই চিরজীবি৷ আর এইরকম ঘটলে প্রত্যেকবার, 10 যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর সামনে ঐ চব্বিশজন প্রাচীন ভূমিষ্ট হয়ে প্রণাম করেন; আর যিনি চিরজীবি তাঁর উপাসনা করেন আর নিজের নিজের মাথার মুকুট সিংহাসনের সামনে রেখে বলেন: 11 ‘আমাদের প্রভু ও ঈশ্বর! তুমি মহিমা, সম্মান ও পরাক্রম পাবার য়োগ্য, কারণ তুমি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছ৷ তোমার ইচ্ছাতেই সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে ও সব কিছুর অস্তিত্ব আছে৷’
1 সিংহাসনে যিনি বসেছিলেন তাঁর ডানহাতে আমি একটি পুস্তকদেখলাম যার ভেতরে ও বাইরে উভয়দিকে লেখা ও তা সাতটি মোহর দিয়ে সীলমোহর করে বন্ধ করা ছিল৷ 2 আর আমি এক শক্তিমান স্বর্গদূতকে দেখলাম, যিনি চিত্কার করে বলছেন, ‘এটি খুলতে পারে ও তার সীলমোহরগুলি ভাঙ্গতে পারে কার এমন য়োগ্যতা আছে?’ 3 কিন্তু কি স্বর্গে, কি পৃথিবীতে, কি পৃথিবীর নীচে কেউ পুস্তকটি না পারল খুলতে, না পারল তার ভেতরে কি আছে তা দেখতে৷ 4 সেই পুস্তকটি খোলবার ও তার ভেতরে দেখবার য়োগ্য কাউকে পাওয়া গেল না দেখে আমি অঝোরে কাঁদতে থাকলাম৷ 5 তখন সেই প্রাচীনদের মধ্যে একজন আমাকে বললেন, ‘তুমি কেঁদো না! দেখ, যিনি যিহূদা বংশের সিংহ, দাযূদের বংশধর, তিনি বিজযী হয়েছেন, তিনি সাতটি সীলমোহর ভাঙ্গার ও পুস্তকটি খোলার য়োগ্য হয়েছেন৷’ 6 পরে আমি দেখলাম ঐ সিংহাসনের সামনে চার জন প্রাণীর সঙ্গে এবং প্রাচীনদের সঙ্গে এক মেষশাবক দাঁড়িয়ে আছেন; সেই মেষশাবককে এমন দেখাচ্ছিল য়েন তাকে বধ করা হয়েছে৷ তাঁর সাতটি শৃঙ্গ ও সাতটি চক্ষু, সেই চক্ষুগুলি হল ঈশ্বরের সপ্ত আত্মা যাদের পৃথিবীর সর্বত্র পাঠানো হয়েছে৷ 7 এরপর সেই মেষশাবক এসে যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর হাত থেকে সেই পুস্তকটি নিলেন৷ 8 তিনি যখন পুস্তকটি নিলেন, তখন ঐ চারজন প্রাণী ও চব্বিশজন প্রাচীন মেষশাবকের সামনে ভূমিষ্ট হয়ে প্রণাম করলেন৷ তাঁদের প্রত্যেকের কাছে ছিল একটি করে বীণা ও সোনার বাটিতে সুগন্ধি ধূপ, সেই ধূপ হচ্ছে ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের প্রার্থনাস্বরূপ৷ 9 তাঁরা মেষশাবকের জন্য এক নতুন গীত গাইছিলেন:‘তুমি ঐ পুস্তকটি নেবার ও তার সীলমোহর ভাঙ্গার য়োগ্য, কারণ তুমি বলি হয়েছিলে; আর তোমার রক্ত দিয়ে সমস্ত উপজাতি, ভাষা, সম্প্রদায় ও জাতির মধ্য থেকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে লোকদের কিনেছ৷ 10 তুমি তাদের নিয়ে এক রাজ্য গড়েছ ও আমাদের ঈশ্বরের যাজক করেছ আর তারা সমস্ত পৃথিবীতে রাজত্ব করবে৷’ 11 পরে আমি তাকালাম, আর সেই সিংহাসন, জীবন্ত প্রাণী ও প্রাচীনদের চারদিকে অনেক স্বর্গদূতের কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম৷ তারা সংখ্যায় লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি৷ 12 তারা উদাত্ত কন্ঠে বলতে লাগলেন:‘সেই মেষশাবক, যিনি হত হয়েছিলেন, তিনিই পরাক্রম, সম্পদ, বিজ্ঞতা, ক্ষমতা, সম্মান, মহিমা ও প্রশংসা পাবার পরম য়োগ্য৷’ 13 পরে আমি স্বর্গে, পৃথিবীতে, পৃথিবীর নীচে ও সমুদ্রের মধ্যে সমস্ত প্রাণী এবং আর যা কিছু সেইসব জায়গাতে ছিল তাদের এই বাণী শুনলাম:‘যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর ও মেষশাবকের প্রতি প্রশংসা, সম্মান, মহিমা ও পরাক্রম যুগে যুগে বর্ষিত হোক্৷’ 14 সেই চারজন প্রাণী তখন বললেন, ‘আমেন!’ এরপর সেই প্রাচীনরা মাথা নীচু করে প্রণাম ও উপাসনা করলেন৷
1 মেষশাবক যখন সেই সাতটির মধ্যে প্রথম সীলমোহরটি ভেঙ্গে খুললেন, তখন আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্যে একজনকে দেখলাম ও তার মেঘ গর্জনের মতো কন্ঠস্বর শুনলাম৷ সে বলল, ‘এস!’ 2 এরপর আমি দেখলাম, আমার সামনে একটি সাদা রঙের ঘোড়া৷ তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁর হাতে একটি ধনুক ছিল৷ তাঁকে একটা মুকুট পরিয়ে দেওয়া হলে তিনি যুদ্ধ জয় করতে বিজেতার মত বাইরে এলেন৷ 3 মেষশাবক যখন দ্বিতীয় সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে দ্বিতীয় জনকে বলতে শুনলাম, ‘এস!’ 4 তখন আর একটি আগুনের মতো লাল রঙের ঘোড়া বের হয়ে এল৷ সেই ঘোড়াটির ওপর য়ে বসে আছে তাকে পৃথিবী থেকে শাস্তি কেড়ে নেবার ক্ষমতা দেওয়া হল; আর দেওয়া হল সেই ক্ষমতা, যার বলে মানুষ পরস্পরকে বধ করবে৷ তাকে একটা বড় তরবারি দেওয়া হল৷ 5 মেষশাবক যখন তৃতীয় সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, আমি শুনলাম, সেই প্রাণীদের মধ্যে তৃতীয় জন বললেন, ‘এস!’ পরে আমি দেখলাম, একটা কালো ঘোড়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে, তার ওপর য়ে বসে আছে, তার হাতে একটা দাঁড়িপাল্লা৷ 6 এরপর আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্য থেকে একটা স্বরের মত কোন একটা কিছু শুনতে পেলাম৷ সেই স্বর বলছে, ‘এক সের গম একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান; আর তিন সের যব, একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান৷ অলিভ তেল ও দ্রাক্ষারস নষ্ট করো না৷’ 7 মেষশাবক যখন চতুর্থ সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে চতুর্থ জনকে বলতে শুনলাম, ‘এস!’ 8 পরে আমি দেখলাম, একটা পাণ্ডুবর্ণ ঘোড়া আমার সামনে, তার ওপর য়ে বসে আছে তার নাম ‘মৃত্যু’৷ আর পাতাল তার ঠিক পেছনেই আছে৷ তাকে পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ লোকের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবার ক্ষমতা দেওয়া হল, য়েন সে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও হিংস্র পশুদের দিয়ে সকলকে বধ করতে পারে৷ 9 মেষশাবক যখন পঞ্চম সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, তখন আমি যজ্ঞবেদীর নীচে সেইসব আত্মাকে দেখলাম য়াঁদের হত্যা করা হয়েছিল, কারণ তাঁরা ঈশ্বরের বার্তা বিশ্বস্তভাবে প্রচার করেছিলেন এবং তাঁদের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন৷ 10 তাঁরা উচ্চকন্ঠে বললেন, ‘পবিত্র ও সত্য প্রভু, যাঁরা আমাদের হত্যা করেছে, পৃথিবীর সেই সমস্ত লোকদের বিচার করতে ও শাস্তি দিতে তুমি আর কতো দেরী করবে?’ 11 তাঁদের প্রত্যেককে শুভ্র রাজ-পোশাক দেওয়া হল এবং আরও কিছুকাল অপেক্ষা করতে বলা হল, কারণ তাঁদের কিছু সহসেবক ভাই ও বোন তখনও ছিলেন যাঁরা তাঁদের মত নিহত হবেন৷ এই সমস্ত নিয়ম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করতে বলা হল৷ 12 পরে আমি যা দেখলাম, তিনি ষষ্ঠ সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন৷ তখন ভীষণ ভূমিকম্প হল৷ সূর্য় কালো শোকবস্ত্রের মত হয়ে গেল, চাঁদ রক্তের মতো লাল হয়ে গেল৷ 13 প্রবল বাতাসে নড়ে গাছ থেকে য়েমন কাঁচা ডুমুর পড়ে যায়, তেমনি আকাশ থেকে নক্ষত্ররা পৃথিবীতে খসে পড়তে লাগল৷ 14 গোটানো পুস্তকের মতো আকাশমণ্ডল অদৃশ্য হল৷ সমস্ত পাহাড় ও দ্বীপকে ঠেলে নিজের জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল৷ 15 পৃথিবীর রাজাগণ, সমস্ত অধিপতি, সেনাবাহিনীর অধিনায়করা, ধনবানেরা, শক্তিশালী লোকরা ও পৃথিবীর সব স্বাধীন লোক এবং সমস্ত দাস গুহার মধ্যেও পাহাড়গুলির পাথরের মধ্যে নিজেদের লুকালো৷ 16 তারা পর্বত এবং পাহাড়গুলোকে বলতে লাগল, ‘আমাদের ওপরে চেপে বসো এবং যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর কাছ থেকে এবং মেষশাবকের ক্রোধের হাত থেকে আমাদের লুকাও৷ 17 কারণ তাদের ক্রোধের মহাদিন এসে পড়ল৷ কার সাধ্য আছে তার সামনে দাঁড়াবার৷
1 এরপর আমি দেখলাম, পৃথিবীর চার কোনে চারজন স্বর্গদূত দাঁড়িয়ে আছেন৷ তাঁরা পৃথিবীর চারটি বাযুপ্রবাহকে আটকে রেখেছেন, য়েন পৃথিবীর বা সমুদ্রের বা গাছের ওপর দিয়ে বাতাস না বয়৷ 2 এরপর আমি আর এক স্বর্গদূতকে পূর্বদিক থেকে উঠে আসতে দেখলাম৷ তাঁর হাতে ছিল জীবন্ত ঈশ্বরের সীলমোহর৷ ঈশ্বর য়ে চারজন স্বর্গদূতকে পৃথিবী ও সমুদ্রে আঘাত করবার ক্ষমতা দিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি চিত্কার করে বললেন, 3 ‘দাঁড়াও, আমরা যতক্ষণ না আমাদের ঈশ্বরের দাসদের কপালে মোহর দ্বারা চিহ্ন না দিই, সে পর্যন্ত তোমরা পৃথিবী, সমুদ্র বা গাছের কোন ক্ষতি করো না৷’ 4 এরপর আমি শুনলাম কত লোকের কপালে চিহ্ন দেওয়া হল৷ মোট একলক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার লোক৷ তারা ছিল সমস্ত ইস্রায়েল গোষ্ঠীর ও জাতির৷ 5 যিহূদা গোষ্ঠীর 12,000রূবেণ গোষ্ঠীর 12,000গাদ গোষ্ঠীর 12,000 6 আশের গোষ্ঠীর 12,000নপ্তালি গোষ্ঠীর 12,000মনঃশি গোষ্ঠীর 12,000 7 শিমিযোন গোষ্ঠীর 12,000লেবি গোষ্ঠীর 12,000ইষাখর গোষ্ঠীর 12,000 8 সবূলূন গোষ্ঠীর 12,000য়োষেফ গোষ্ঠীর 12,000বিন্যামীন গোষ্ঠীর 12,000 9 এরপর আমি দেখলাম প্রত্যেক জাতির, প্রত্যেক বংশের এবং প্রত্যেক গোষ্ঠীর ও ভাষার অগণিত লোক সেই সিংহাসন ও মেষশাবকের সামনে এসে তারা দাঁড়িয়েছে৷ তাদের পরণে শুভ্র পোশাক এবং হাতে খেজুর পাতা৷ 10 তারা সকলে চিত্কার করে বলছে, ‘যিনি সিংহাসনে বসে আছেন, এই জয় সেই ঈশ্বরের ও মেষশাবকের দান৷’ 11 সমস্ত স্বর্গদূত সিংহাসনের প্রাচীনদের ও চারজন প্রাণীর চারদিক ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ তাঁরা সিংহাসনের সামনে মাথা নীচু করে প্রণাম করলেন ও ঈশ্বরের উপাসনা করতে থাকলেন৷ 12 তাঁরা বললেন, ‘আমেন! প্রশংসা, মহিমা, প্রজ্ঞা, ধন্যবাদ, সম্মান, পরাক্রম ও ক্ষমতা যুগপর্য়ায়ের যুগে যুগে আমাদের ঈশ্বরেরই হোক্৷ আমেন!’ 13 এরপর সেই প্রাচীনদের মধ্যে একজন আমায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘শুভ্র পোশাক পর! এই লোকরা কে, আর এরা সব কোথা থেকে এসেছে?’ 14 আমি তাঁকে বললাম, ‘মহাশয়, আপনি জানেন৷’তিনি আমায় বললেন, ‘এরা সেই লোক যাঁরা মহানির্য়াতন সহ্য করে এসেছে; আর মেষশাবকের রক্তে নিজের পোশাক ধুয়ে শুচীশুভ্র করেছে৷ 15 এই কারণেই এরা ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে; আর দিন রাত তাঁর মন্দিরে তাঁর উপাসনা করে চলেছে৷ যিনি সিংহাসনে বসে আছেন, তিনি এদের রক্ষা করবেন৷ 16 এরা আর কখনও ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত হবে না, এদের গায়ে রোদ বা তার প্রখর তাপও লাগবে না৷ 17 কারণ সিংহাসনের ঠিক সামনে য়ে মেষশাবক আছেন তিনি এদের মেষপালক হবেন, তাদের জীবন জলের প্রস্রবণের কাছে নিয়ে যাবেন আর ঈশ্বর এদের সমস্ত চোখের জল মুছিয়ে দেবেন৷’
1 তারপর মেষশাবক সপ্তম সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন৷ তখন স্বর্গে প্রায় আধ ঘন্টার মতো সব নিস্তধ্ধ হয়ে গেল৷ 2 তারপর আমি দেখলাম, ঈশ্বরের সামনে য়ে সাতজন স্বর্গদূত দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁদের হাতে সাতটি তূরী দেওয়া হল৷ 3 পরে আর এক স্বর্গদূত এসে যজ্ঞবেদীর কাছে দাঁড়ালেন, তাঁর হাতে সোনার ধুনুচি৷ তাঁকে প্রচুর ধূপ দেওয়া হল, যাতে তিনি তা স্বর্ণ সিংহাসনের সামনে ঈশ্বরের সমস্ত পবিত্র লোকের প্রার্থনার সঙ্গে নিবেদন করতে পারেন৷ 4 ফলে ঈশ্বরের লোকদের প্রার্থনার সঙ্গে স্বর্গদূতের হাত থেকে সেই ধূপের ধোঁয়া ঈশ্বরের সামনে উঠল৷ 5 পরে ঐ স্বর্গদূত ধুনুচি নিয়ে তাতে যজ্ঞবেদীর আগুন ভরে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করলেন৷ এর ফলে মেঘ গর্জন, উচ্চরব, বিদ্য়ুত্ চমক ও ভুমিকম্প হল৷ 6 তখন সেই সাতজন স্বর্গদূত তাদের সাতটি তূরী বাজাবার জন্য প্রস্তুত হলেন৷ 7 প্রথম স্বর্গদূত বাজালেন, তাতে পৃথিবীতে রক্ত মেশানো শিলা ও আগুন বর্ষন হল; ফলে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশে আগুন ধরে গেল, আর এক তৃতীয়াংশে গাছপালা ও সমস্ত সবুজ ঘাস পুড়ে গেল৷ 8 দ্বিতীয় স্বর্গদূত তূরী বাজালেন; আর দেখা গেল য়েন বিরাট এক জ্বলন্ত পাহাড় সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ 9 তাতে সমুদ্রের এক তৃতীয়াংশ জল রক্তাক্ত হয়ে গেল ও সামুদ্রিক জীবের এক তৃতীয়াংশ মারা পড়ল; আর সমুদ্রগামী সমস্ত জাহাজের এক তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে গেল৷ 10 পরে তৃতীয় স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, তখন আকাশ থেকে জ্বলন্ত মশালের মতো এক বিরাট নক্ষত্র পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ নদী ও জলের উত্সের ওপর খসে পড়ল৷ 11 সেই নক্ষত্রের নাম নাগদানাকারণ তা পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ জল তিক্ত করে দিল৷ এভাবে জল তেতো হওয়ার কারণে অনেক লোক মারা পড়ল৷ 12 এরপর চতুর্থ স্বর্গদূত তূরী বাজালেন আর সূর্যের এক তৃতীয়াংশ, চন্দরের এক তৃতীয়াংশ এবং সমস্ত নক্ষত্রের এক তৃতীয়াংশ এমনভাবে ঘা খেল য়ে তাদের এক তৃতীয়াংশ অন্ধকার হয়ে গেল৷ সেইভাবে দিনেরও এক তৃতীয়াংশ আলোবিহীন হল, আর রাত্রির অবস্থাও একই রকম হল৷ 13 এইসব কিছু দেখতে দেখতে হঠাত্ আমি শুনতে পেলাম আকাশের উঁচু দিয়ে একটা ঈগল পাখি উড়ে য়েতে য়েতে চিত্কার করে এই কথা বলছে, ‘সন্তাপ! সন্তাপ! পৃথিবীবাসীদের সন্তাপ! কারণ বাকী তিনজন স্বর্গদূত যখন তূরী বাজাবে তখন সেই সন্তাপ শুরু হবে৷’
1 পরে পঞ্চম স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, আর আমি দেখলাম স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে একটা তারা খসে পড়ল; আর তারাটাকে অতল কূপ খোলার চাবি দেওয়া হল৷ 2 নক্ষত্রটি অগাধ লোকের কূপটি খুলল৷ তত্ক্ষনাত্ ঐ কূপ থেকে বিরাট অগ্নিকুণ্ডের মধ্য থেকে য়েমন ধোঁয়া বার হয় তেমনি ধোঁয়া নির্গত হল৷ এই ধোঁয়ার জন্য সূর্য় ও বাযুমণ্ডল অন্ধকার হয়ে গেল৷ 3 পরে সেই ধোঁয়া থেকে পঙ্গপালের ঝাঁক বের হয়ে পৃথিবীতে এল; আর পৃথিবীর কাঁকড়া বিছের মধ্যে য়ে ক্ষমতা থাকে তাদের তা দেওয়া হল৷ 4 পঙ্গপালদের বলা হল য়েন তারা ঘাস, চারাগাছ বা পৃথিবীর গাছপালার কোন ক্ষতি না করে, কেবল তাদেরই ক্ষতি করে যাদের কপালে ঈশ্বরের চিহ্ন নেই৷ 5 ঐ লোকদের মেরে ফেলতে তাদের অনুমতি দেওয়া হল না, কেবল পাঁচ মাস পর্যন্ত তাদের যন্ত্রণা দেবার অনুমতি দেওয়া হল৷ তাদের যন্ত্রণা কাঁকড়াবিছে কামড়ালে মানুষের য়েমন যন্ত্রণা হয় তেমনি হবে৷ 6 তখন মানুষ মরতে চাইলেও মরতে পারবে না৷ তারা মৃত্যুর আকাঙ্খা করবে; কিন্তু মৃত্যু তাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে৷ 7 সেই পঙ্গপালদের দেখতে য়েন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ঘোড়ার মতো৷ তাদের মাথায় সোনার মুকুটের মতো মুকুট ছিল৷ তাদের মুখমণ্ডল য়েন মানুষের মুখগুলির মতো৷ 8 স্ত্রীলোকের চুলের মতো তাদের মাথার চুল, আর তাদের দাঁত সিংহের দাঁতের মতো৷ 9 বুকে তাদের বর্ম পরা, তা লোহার বর্মের মতো; আর বহু ঘোড়ায় টানা যুদ্ধের রথ ছুটলে য়েমন আওয়াজ হয় তেমনি তাদের ডানার শব্দ৷ 10 তাদের হুলযুক্ত লেজ ছিল কাঁকড়া বিছের মতো৷ পাঁচ মাস পর্যন্ত তারা মানুষের য়ে ক্ষতি করবে তার ক্ষমতা ঐ লেজের মধ্যে আছে৷ 11 ঐ পঙ্গপালের রাজা হচ্ছে অগাধ লোকের স্বর্গদূত৷ ইব্রীয় ভাষায় তার নাম ‘আবদ্দোন,’গ্রীক ভাষায় ‘আপল্লুযোন’ যার অর্থ বিনাশকারী৷ 12 প্রথম সন্তাপ কাটল, দেখ, এরপর আরও দুটি সন্তাপ আসছে৷ 13 পরে ষষ্ঠ স্বর্গদূত তূরী বাজালে আমি ঈশ্বরের সামনে সোনার যজ্ঞবেদীর য়ে চারটি শিং আছে তার মধ্য থেকে এক বাণী শুনতে পেলাম, 14 সেই কন্ঠস্বর ষষ্ঠ তূরীধারী স্বর্গদূতকে বললেন, ‘ইউফ্রেটিস মহানদীর কাছে য়ে চারজন স্বর্গদূত হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আছেন তাদের মুক্ত কর৷’ 15 তখন পৃথিবীর মানুষের এক তৃতীয়াংশ ধ্বংস করার জন্য য়ে চারজন স্বর্গদূতকে সেই বিশেষ মুহূর্ত, দিন, মাস ও বছরের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল তাদের মুক্ত করা হল৷ 16 তাদের দলে ছিল বিশ কোটি অশ্বারোহী সৈন্য৷ আমি তাদের সেই সংখ্যা গুনলাম৷ 17 আমি এক দর্শনের মাধ্যমে সেই ঘোড়াগুলিকে ও তাদের ওপর যাঁরা বসেছিল তাদের এইরকম দেখলাম, - তাদের বর্ম ছিল আগুনের মতো লাল, ঘন নীল ও গন্ধকের মতো হলদে রঙের৷ ঘোড়াগুলির মাথা সিংহের মতো৷ 18 তাদের মুখ থেকে তিনটি আঘাতে আগুন, ধোঁয়া, গন্ধক নির্গত হচ্ছিল, তার দ্বারা পৃথিবীর মানুষের এক তৃতীয়াংশ লোক মারা পড়ল৷ 19 সেই ঘোড়াগুলির আঘাত করার শক্তি তাদের মুখে ও লেজে ছিল৷ তাদের লেজ সাপের মতো মাথাওয়ালা, তারা দ্বারা তারা ক্ষতি করতে পারত৷ 20 এই সব আঘাত পাওয়া সত্ত্বেও যাঁরা মরল না বাকি সেই লোকেরা নিজেরা নিজের হাতে গড়া বস্তুর থেকে মন-ফেরালো না৷ তারা ভূতপ্রেত ও সোনা, রূপা, পিতল, পাথর এবং কাঠের তৈরী মূর্ত্তি পূজা করা থেকে বিরত হল না - সেইসব মূর্ত্তি, যাঁরা না দেখতে পায়, না শুনতে বা কথা বলতে পারে৷ 21 তারা নরহত্যা, মোহিনীবিদ্যা, ব্যভিচার এবং চুরির জন্য অনুতপ্ত হল না৷
1 পরে আমি একজন শক্তিশালী স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম৷ তিনি একখণ্ড মেঘকে পোশাকের মতো করে পরেছিলেন, আর তাঁর মাথার চারদিকে মেঘধনুক ছিল৷ তাঁর মুখ সূর্যের মতো, আর পা আগুনের থামের মতো৷ 2 তাঁর হাতে ছিল একটি খোলা পুস্তক৷ তিনি তাঁর ডান পা-টি সমুদ্রের ওপরে আর বাঁ পাটি স্থলে রাখলেন৷ 3 আর সিংহ গর্জনের মতো হুঙ্কার ছাড়লেন৷ স্বর্গদূতের গর্জনের পর সপ্ত বজ্রধ্বনি হুঙ্কার করে উঠল৷ 4 যখন সপ্ত বজ্রধ্বনি কথা বলল তখন আমি তা লিখতে চাইলাম৷ কিন্তু স্বর্গ থেকে এক স্বর বলল, ‘তুমি লিখো না৷ বজ্র যা বলছে তা গোপন রাখ৷’ 5 পরে সেই স্বর্গদূত যাকে আমি সমুদ্রের ওপরে এবং স্থলের ওপরে পা রেখে দাঁড়াতে দেখেছিলাম, স্বর্গের দিকে তাঁর ডান হাতটি ওঠালেন; 6 আর যিনি যুগে যুগে জীবন্ত, যিনি আকাশ, পৃথিবী ও সমুদ্র ও এই সবের মধ্যে যা কিছু আছে তার সৃষ্টিকর্তা, তাঁর নামে এই শপথ করে বললেন, ‘আর দেরী হবে না৷ 7 যখন সপ্তম স্বর্গদূতের তূরী বাজানোর সময় আসবে তখন ঈশ্বরের সেই নিগৃঢ় পরিকল্পনা পরিপূর্ণ হবে৷ এ সেই সুসমাচারের পরিকল্পনা যা ঈশ্বর তাঁর ভাববাদী ও দাসদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন৷’ 8 এরপর স্বর্গ থেকে সেই রব আমি আবার শুনতে পেলাম৷ সেই রব আমাকে বলল, ‘যাও, স্বর্গদূতের হাত থেকে খোলা পুস্তকটি নাও৷’ এই সেই স্বর্গদূত যিনি সমুদ্র ও স্থলের ওপর পা রেখে দাঁড়িয়েছিলেন৷’ 9 তখন আমি সেই স্বর্গদূতের কাছে গিয়ে তাঁকে বললাম, ঐ ছোট্ট পুস্তকখানি আমায় দিন৷ তিনি আমায় বললেন, ‘নাও, খেয়ে ফেল৷ এটা তোমার পেটে গিয়ে তিক্ত হবে৷ কিন্তু মুখে মধুর মতো মিষ্টি লাগবে৷’ 10 তখন আমি স্বর্গদূতের হাত থেকে সেটি নিয়ে খেয়ে ফেললাম, তা মুখে মধুর মতো মিষ্টি লাগল; কিন্তু খাওয়ার পর আমার পাকস্থলী তিক্ততায় ভরে গেল৷ 11 তিনি আমাকে বললেন, ‘অনেক লোক, জাতি, ভাষা এবং রাজাদের সম্বন্ধে তোমাকে আবার ভাববাণী করতে হবে৷’
1 এরপর আমাকে বেড়ানোর লাঠির মতো একটি মাপকাঠি দেওয়া হল৷ একজন বললেন, ‘ওঠ, ঈশ্বরের মন্দির ও যজ্ঞবেদীর পরিমাপ কর আর তার মধ্যে যাঁরা উপাসনা করছে তাদের সংখ্যা গণনা কর৷ 2 কিন্তু মন্দিরের বাইরের প্রাঙ্গণের কোন মাপ নিও না, কারণ তা অইহুদীদের দেওয়া হয়েছে৷ বিয়াল্লিশ মাস ধরে তারা সেই পবিত্র নগরটি পায়ে দলবে৷ 3 আমি আমার দুজন সাক্ষীকে ক্ষমতা দেব, তাঁরা বারশো ষাট দিন পর্যন্ত ভাববাণী বলবেন৷’ 4 সেই দুজন সাক্ষী হলেন দুটি জলপাই গাছ ও দুটি দীপাধার, যাঁরা পৃথিবীর প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন৷ 5 যদি কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চায়, তবে ঐ সাক্ষীদের মুখ থেকে আগুন বেরিয়ে এসে তাঁদের শত্রুদের গ্রাস করবে, য়ে কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চাইবে তাদেরও এইভাবে মরতে হবে৷ 6 আকাশ রুদ্ধ করে দেবার ক্ষমতা তাঁদের আছে, য়েন ভাববাণী বলার সময় বৃষ্টি না হয়; আর জল রক্তে পরিণত করবার ও পৃথিবীর বুকে সব রকমের মহামারী যতবার ইচ্ছা ততবার পাঠাবার ক্ষমতা তাঁদের আছে৷ 7 তাঁদের সাক্ষ্যদান শেষ হলে, য়ে পশু পাতালের অতলস্পর্শী কূপ থেকে উঠে আসবে সে তাঁদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে, আর যুদ্ধে তাদের হারিয়ে দিয়ে হত্যা করবে৷ 8 তাঁদের মৃত দেহগুলি সেই মহানগরের রাস্তার ওপরে পড়ে থাকবে, এ সেই নগর যাকে আত্মিক অর্থে সদোম ও মিশর বলে; আর এই নগরেই তাঁদের প্রভু ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলেন৷ 9 লোকরা তাঁদের কবর দিতে অনুমতি দেবে না৷ সমস্ত উপজাতি, সম্প্রদায়, ভাষাভাষী ও জাতির লোকরা জড়ো হয়ে সাড়ে তিন দিন ধরে তাঁদের শব দেখতে থাকবে৷ 10 পৃথিবীর লোকরা আনন্দিত হবে, কারণ ঐ দুজনের মৃত্যু হয়েছে৷ তারা আমোদ-প্রমোদ করবে, পরস্পরকে উপহার পাঠাবে, কারণ এই দুজন ভাববাদী পৃথিবীর লোকদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন৷ 11 এরপর সেই সাড়ে তিন দিন শেষ হলে ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবনের আত্মা তাঁদের মধ্যে প্রবেশ করল, আর তাঁরা উঠে দাঁড়ালেন৷ যাঁরা তাদের দেখল তাদের মধ্যে প্রচণ্ড ভয়ের সঞ্চার হল৷ 12 সেই দুজন ভাববাদী স্বর্গ থেকে এক রব শুনলেন, ‘এখানে উঠে এস!’ তখন তাঁরা মেঘের মধ্য দিয়ে স্বর্গে উঠে গেলেন; আর তাঁদের শত্রুরা তাদের য়েতে দেখল৷ 13 সেই মুহূর্তে প্রচণ্ড ভূমিকম্প হল, তার ফলে শহরের দশভাগের একভাগ ধ্বংস হয়ে গেল এবং সাত হাজার লোক মারা পড়ল৷ যাঁরা বাকি রইল তারা সকলে প্রচণ্ড ভয় পেল ও স্বর্গের ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করল৷ 14 দ্বিতীয় সন্তাপ কাটল, দেখ, তৃতীয় সন্তাপ শিগ্গির আসছে৷ 15 এরপর সপ্তম স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, তখন স্বর্গে কারা য়েন উদাত্ত কন্ঠে বলে উঠল:‘জগতের ওপর শাসন করবার ভার এখন আমাদের প্রভুর ও তাঁর খ্রীষ্টের হল, আর তিনি যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে রাজত্ব করবেন৷’ 16 পরে সেই চব্বিশ জন প্রাচীন, যাঁরা ঈশ্বরের সামনে নিজেদের সিংহাসনে বসে থাকেন, তাঁরা উপুড় হয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করলেন৷ 17 তাঁরা বললেন:‘প্রভু ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান, যিনি আছেন ও ছিলেন, আমরা তোমাকে ধন্যবাদ জানাই; কারণ তুমি নিজ পরাক্রম ব্যবহার করেছ এবং রাজত্ব করতে শুরু করেছ৷ 18 জগতের জাতিবৃন্দ তোমার ওপর ক্রুদ্ধ ছিল; কিন্তু এখন তোমার ক্রোধ তাদের ওপর উপস্থিত হল৷ মৃত লোকদের বিচারের সময় হয়েছে; আর তোমার ভাববাদী, যাঁরা তোমার দাস, যাঁরা তোমার লোক, ক্ষুদ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ সব লোক যাঁরা তোমাকে শ্রদ্ধা করে, তাদের পুরস্কার দেওয়ার সময় হয়েছে৷ যাঁরা পৃথিবীকে ধ্বংস করছে তাদের ধ্বংস করবার সময় হয়েছে৷’ 19 পরে স্বর্গে ঈশ্বরের মন্দিরের দরজা উন্মুক্ত হলে মন্দিরের মধ্যে তাঁর চুক্তির সিন্দুকটি দেখা গেল, বিদ্য়ুত চমকালো, গুরু গুরু শব্দ, বজ্রপাত, ভূমিকম্প ও প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি হল৷
1 তারপর স্বর্গে এক মহত্ ও বিস্ময়কর সঙ্কেত দেখা গেল৷ একটি স্ত্রীলোককে দেখা গেল, সূর্য় যার বসন, যার পায়ের নীচে ছিল চাঁদ, আর বারোটি নক্ষত্রের এক মুকুট তার মাথায়৷ 2 স্ত্রীলোকটি গর্ভবতী, প্রসব বেদনায় সে চিত্কার করছিল৷ 3 এরপর স্বর্গে আর এক নিদর্শন দেখা দিল, এক প্রকাণ্ড নাগ দেখা গেল, যার রঙ ছিল লাল, তার সাতটি মাথা, দশটি শিং আর সাতটি মাথায় সাতটি মুকুট৷ 4 সে তার লেজ দিয়ে আকাশের এক তৃতীয়াংশ নক্ষত্র টেনে নামিয়ে এনে পৃথিবীর ওপর ফেলল৷ য়ে স্ত্রীলোকটি সন্তান প্রসব করার অপেক্ষায় ছিল, সেই নাগটি তার সামনে দাঁড়াল, য়েন স্ত্রীলোকটি সন্তান প্রসব করার সঙ্গে সঙ্গে সে তার সন্তানকে গ্রাস করতে পারে৷ 5 স্ত্রীলোকটি এক পুত্র সন্তান প্রসব করল, যিনি লৌহ দণ্ড দিয়ে সমস্ত জাতিকে শাসন করবেন৷ তার সন্তানকে ঈশ্বরের সিংহাসনের কাছে নিয়ে যাওয়া হল; 6 আর সেই স্ত্রীলোকটি প্রান্তরে পালিয়ে গেল, সেখানে ঈশ্বর তার জন্য একটি স্থান প্রস্তুত করে রেখেছিলেন, সেখানে সে বারশো ষাট দিন পর্যন্ত প্রতিপালিতা হবে৷ 7 এরপর স্বর্গে এক যুদ্ধ বেধে গেল৷ মীখায়েল ও তার অধীনে অন্যান্য স্বর্গদূতরা সেই নাগের সঙ্গে যুদ্ধ করল৷ সেই নাগও তার অপদূতদের সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধ করতে লাগল; 8 কিন্তু সাপ যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না, তাই তারা স্বর্গের স্থান হারালো৷ 9 সেই বিরাট নাগকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ এই বিরাট নাগ হল সেই পুরানো নাগ যাকে দিয়াবল বা শয়তান বলা হয়, সে সমগ্র জগতকে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যায়৷ সেই নাগ ও তার সঙ্গী অপদূতদের পৃথিবীতে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ 10 তখন আমি স্বর্গে এক উচ্চস্বর শুনতে পেলাম, ‘এখন আমাদের ঈশ্বরের জয়, পরাক্রম, রাজত্ব, ধ্বনি ও তাঁর খ্রীষ্টের কর্তৃত্ত্ব এসে পড়েছে৷ এসবই সন্ভব হয়েছে কারণ আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে য়ে দোষারোপকারী, তাকে নীচে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে৷ সে দিন রাত আমাদের ঈশ্বরের সামনে তাদের নামে দোষারোপ করত৷ 11 তারা মেষশাবকের রক্তে ও নিজের নিজের সাক্ষ্য দ্বারা সেই নাগকে পরাস্ত করেছে৷ তারা নিজের প্রাণ তুচ্ছ করে খ্রীষ্টের জন্য মৃত্যুবরণ করতে প্রস্তুত ছিল৷ 12 তাই স্বর্গ এবং সেখানে বসবাসকারী তোমরা সকলে আনন্দ কর! কিন্তু পৃথিবী ও সমুদ্রের কি দুর্দশাই না হবে, কারণ দিয়াবল তোমাদের কাছে নেমে এসেছে৷ সে রাগে ফুঁসছে, কারণ সে জানে য়ে তার আর বেশী সময় বাকী নেই৷’ 13 পরে ঐ নাগ যখন দেখল য়ে পৃথিবীতে তাকে ছুঁড়ে ফেলা হল, তখন য়ে স্ত্রীলোকটি পুত্র প্রসব করেছিল, সেই স্ত্রীলোকটির পেছনে সে তাড়া করতে ছুটল৷ 14 কিন্তু সেই স্ত্রীলোকটিকে খুব বড় ঈগলের দুটি ডানা দেওয়া হল, য়েন য়ে প্রান্তর তার জন্য নির্দিষ্ট সেই স্থানে সে উড়ে য়েতে পারে; সেখানে সে ঐ নাগের দৃষ্টি থেকে দূরে সাড়ে তিন বছর পর্যন্ত নিরাপদে প্রতিপালিতা হবে৷ 15 তখন সেই নাগ স্ত্রীলোকটিকে লক্ষ্য করে তার মুখ থেকে নদীর জলের মতো জলপ্রবাহ বইয়ে দিল৷ সেই জল বন্যার মতো এমনভাবে ধেয়ে এল য়েন তাকে ভাসিয়ে নিয়ে য়েতে পারে৷ 16 কিন্তু পৃথিবী সেই স্ত্রীলোকটিকে সাহায্য করল; পৃথিবী তার মুখ খুলে নাগের মুখ থেকে নির্গত জল টেনে নিল৷ 17 তখন সেই নাগ স্ত্রীলোকের ওপর রেগে গিয়ে ঈশ্বরের আদেশ পালনকারী ও যীশুর সত্য শিক্ষাসকল ধারণকারী তাঁর বাকি সব সন্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল; 18 আর সেই নাগ সমুদ্রের তীরে বালুকার ওপর গিয়ে দাঁড়াল৷
1 এরপর আমি দেখলাম সমুদ্রের মধ্য থেকে একটা পশু উঠে আসছে, তার দশটা শিং ও সাতটা মাথা; আর তার সেই দশটা শিং-এর প্রত্যেকটাতে মুকুট পরানো আছে৷ তার প্রতিটি মাথার ওপর ঈশ্বরের নিন্দাসূচক বিভিন্ন নাম৷ 2 য়ে পশুটিকে আমি দেখলাম, তাকে দেখতে একটা চিতা বাঘের মতো৷ তার পা ভাল্লুকের মতো, তার মুখটা সিংহের মুখের মতো৷ সমুদ্র তীরের সেই নাগ তার নিজের ক্ষমতা, তার নিজের সিংহাসন ও মহাকর্তৃত্ত্ব এই পশুকে দিল৷ 3 আমি লক্ষ্য করলাম য়ে তার একটি মাথায় য়েন এক মৃত্যুজনক ক্ষত রয়েছে; কিন্তু সেই মৃত্যুজনক ক্ষতটিকে সারিয়ে তোলা হল৷ এই দেখে সমস্ত জগতের লোক আশ্চর্য হয়ে গেল; আর তারা সেই পশুর অনুসরণ করল৷ 4 ঐ পশুকে এমন ক্ষমতা দেবার জন্য লোকেরা সেই নাগের আরাধনা করতে লাগল৷ তারা সেই পশুরও আরাধনা করে বলল, ‘এই পশুর মতো আর কে আছে, কেই বা এর সঙ্গে যুদ্ধ করতে সক্ষম? 5 গর্ব করার ও ঈশ্বর নিন্দা করার জন্য সেই পশুটিকে অনুমতি দেওয়া হল৷ বিয়াল্লিশ মাস ধরে এই কাজ করার ক্ষমতা তাকে দেওয়া হল৷ 6 তাতে সে ঈশ্বরের অপমান করতে শুরু করল, ঈশ্বরের নামের, তাঁর বাসস্থানের আর স্বর্গবাসী সকলের নিন্দা করতে লাগল৷ 7 ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ও তাদের পরাস্ত করবার ক্ষমতা তাকে দেওয়া হল; আর জগতের সমস্ত বংশ, লোকসমাজ, ভাষা ও জাতির ওপর কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতাও তাকে দেওয়া হল৷ 8 পৃথিবীর সমস্ত মানুষ, যাদের নাম জগত সৃষ্টির আগে থেকে সেই উত্সর্গীকৃত মেষশাবকের জীবন পুস্তকে লেখা হয় নি, তারা সকলে ঐ পশুর ভজনা করবে৷ ইনি সেই মেষশাবক যিনি হত হয়েছিলেন৷ 9 যার কান আছে সে শুনুক: 10 ‘বন্দী হবার জন্য য়ে নিরুপিত তাকে বন্দী হতে হবে, যদি তরবারির আঘাতে হত হওয়া কারও জন্য নির্ধারিত থাকে তবে তাকে তরবারির আঘাতে হত হতে হবে৷এর অর্থ ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ধৈর্য্য ও বিশ্বাস অবশ্যই থাকবে৷ 11 এরপর আমি পৃথিবীর মধ্য থেকে আর একটি পশুকে উঠে আসতে দেখলাম, মেষশাবকের মতো তার দুটি শিং ছিল, কিন্তু সে নাগের মত কথা বলত৷ 12 সে ঐ প্রথম পশুটির সমস্ত কর্তৃত্ত্ব প্রথম পশুর উপস্থিতিতে প্রযোগ করল এবং সেই শক্তিবলে বিশ্বের সকল লোককে প্রথম পশুটির আরাধনা করতে বাধ্য করল, যার মাথার ক্ষত সেরে গিয়েছিল৷ 13 দ্বিতীয় পশুটি মহা অলৌকিক সব কাজ করতে লাগল, এমন কি সকলের চোখের সামনে আকাশ থেকে পৃথিবীতে আগুন নামাল৷ 14 এইভাবে সে প্রথম পশুর সেবার্থে তাকে প্রদত্ত শক্তির বলে অলৌকিক কাজ করে পৃথিবীবাসীদের ঠকাল৷ সে পৃথিবীর লোকদের বলল, ‘য়ে পশু তরবারির আঘাতে আহত হয়েও বেঁচে উঠেছে, তার সম্মানার্থে একঢি মূর্তি গড়৷ 15 একে এমন ক্ষমতা দেওয়া হল যাতে সে প্রথম পশুর প্রতিমার মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করতে পারে, য়েন সেই প্রতিমা কথা বলতে পারে ও য়ে সেই পশুর প্রতিমার আরাধনা না করে তাকে হত্যা করার আদেশ দেয়৷ 16 এই পশু কি ক্ষুদ্র, কি মহান, ধনী ও দরিদ্র, স্বাধীন ও ক্রীতদাস, সকলকে তাদের ডানহাতে অথবা কপালে এক বিশেষ চিহ্নের ছাপ দিতে বাধ্য করাল৷ 17 যাদের পশুর নামের ছাপ ও সংখ্যাসূচক ছাপ ছিল না তারা কেনা বেচার অধিকার হারাল৷ 18 য়ে বুদ্ধিমান সে ঐ পশুর সংখ্যা গণনা করুক৷ এরজন্য বিজ্ঞতার প্রযোজন৷ ঐ সংখ্যাটি একটি মানুষের নামের সংখ্যা আর সেই সংখ্যা হচ্ছে
1 এরপর আমি সিযোন পর্বতের ওপর এক মেষশাবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম৷ তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে 1,44,000 জন লোক৷ তাদের প্রত্যেকের কপালে তাঁর নাম ও তাঁর পিতার নাম লিখিত৷ 2 পরে আমি স্বর্গ থেকে শুনতে পেলাম প্রবল জলকল্লোলের মতো, প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এক কন্ঠস্বর; য়ে স্বর আমি শুনলাম তাতে মনে হল য়েন একটা বীণাবাদক দল তাঁদের বীণা বাজাচ্ছেন৷ 3 তাঁরা সকলে সিংহাসনের সামনে ও সেই চারজন প্রাণী ও প্রাচীনদের সামনে এক নতুন গীত গাইছিলেন৷ পৃথিবী থেকে যাদের মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছিল সেই 1,44,000 জন লোক ছাড়া আর অন্য কেউই সেই গান শিখতে পারল না৷ 4 এই 1,44,000 জন লোক হলেন তাঁরা যাঁরা স্ত্রীলোকদের সংসর্গে নিজেদের কলুষিত করেন নি, কারণ তাঁরা খাঁটি৷ তাঁরা মেষশাবক য়েখানে যান সেখানেই তাঁকে অনুসরণ করেন৷ পৃথিবীর লোকদের মধ্য থেকে এই 1,44,000 জন লোককে মুক্ত করা হয়েছে৷ ঈশ্বর ও মেষশাবকের উদ্দেশ্যে তাঁরা মনুষ্যদের মধ্য থেকে অগ্রিমাংশরূপে গৃহীত হয়েছেন৷ 5 তাঁদের মুখে কোন মিথ্যা কথা পাওয়া যায় নি৷ তাঁরা নির্দোষ৷ 6 পরে আমি আর একজন স্বর্গদূতকে আকাশপথে উড়ে য়েতে দেখলাম৷ পৃথিবীবাসী লোকদের কাছে, পৃথিবীর সকল জাতি, উপজাতি, সকল ভাষাভাষী লোকের কাছে ঘোষণা করার জন্য এই স্বর্গদূতের কাছে ছিল অনন্তকালীন সুসমাচার৷ 7 স্বর্গদূত উদাত্ত কন্ঠে এই কথা বললেন, ‘ঈশ্বরকে ভয় করো ও তাঁর প্রশংসা করো, কারণ সময় হয়েছে, যখন ঈশ্বর সমস্ত লোকদের বিচার করবেন৷ যিনি স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সমস্ত জলের উত্স সৃষ্টি করেছেন, সেই ঈশ্বরেরই উপাসনা করো৷’ 8 এরপর প্রথম স্বর্গদূতদের পিছন পিছন দ্বিতীয় স্বর্গদূত উড়ে এসে বললেন, ‘পতন হল! মহানগরী বাবিলের পতন হল! সে সমস্ত জাতিকে ঈশ্বরের ক্রোধের ও তার ব্যভিচারের মদিরা পান করিয়েছে৷’ 9 এরপর ঐ দুজন স্বর্গদূতের পেছনে আর এক স্বর্গদূত এসে চিত্কার করে বললেন, ‘যদি কেউ সেই পশু ও তার প্রতিমার আরাধনা করে আর কপালে অথবা হাতে তার ছাপধারণ করে 10 তবে সেও ঈশ্বরের সেই রোষ মদিরা পান করবে, যা ঈশ্বরের ক্রোধের পাত্রে অমিশ্রিত অবস্থায় ঢালা হচ্ছে৷ পবিত্র স্বর্গদূতদের ও মেষশাবকের সামনে জ্বলন্ত গন্ধকে ও আগুনে পুড়ে তাকে কি নিদারুণ যন্ত্রণাই না পেতে হবে৷ 11 তাদের যন্ত্রণার ধোঁয়া যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে উপরে উঠতে থাকবে৷ যাঁরা সেই পশু ও তাঁর মূর্তির আরাধনা করে অথবা য়ে কেউ তার নামের ছাপ ধারণ করে, তারা দিনে কি রাতে কখনও বিশ্রাম পাবে না৷’ 12 এখানেই ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ধৈর্য্যের প্রযোজন, যাঁরা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করবে ও যীশুর প্রতি বিশ্বাসে স্থির থাকবে৷ 13 এরপর আমি স্বর্গ থেকে একটা রব শুনলাম, ‘তুমি এই কথা লেখ; এখন থেকে মৃত লোকেরা ধন্য, যাঁরা প্রভুর সঙ্গে যুক্ত থেকে মৃত্যুবরণ করেছে৷’আত্মা একথা বলছেন, ‘হ্যাঁ, এ সত্য৷ তারা তাদের কঠোর পরিশ্রম থেকে বিশ্রাম লাভ করবে, কারণ তাদের সব সত্কর্ম তাদের অনুসরণ করে৷’ 14 পরে আমি তাকিয়ে দেখলাম, আমার সামনে একখণ্ড সাদা মেঘ৷ সেই মেঘের ওপর মানবপুত্রেরমতো একজন বসে আছেন৷ তাঁর মাথায় সোনার মুকুট ও তার হাতে একটা ধারালো কাস্তে৷ 15 এরপর মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বের হয়ে এলেন৷ যিনি মেঘের ওপরে বসে আছেন তাঁকে তিনি বললেন, ‘আপনার কাস্তে লাগান ও শস্য সংগ্রহ করুন, কারণ শস্য সংগ্রহের সময় হয়েছে৷ পৃথিবীর সব শস্য পেকেছে৷’ 16 তাই যিনি সেই মেঘের ওপর বসেছিলেন তিনি পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালালেন আর পৃথিবীর ফসল তোলা হল৷ 17 এরপর স্বর্গের মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বেরিয়ে এলেন৷ এই স্বর্গদূতের হাতে এক ধারালো কাস্তে ছিল, 18 আর যজ্ঞবেদী থেকে অন্য এক স্বর্গদূত উঠে এলেন, য়াঁর আগুনের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতা ছিল৷ তিনি ঐ ধারালো কাস্তে হাতে য়ে স্বর্গদূত ছিলেন তার উদ্দেশ্যে চিত্কার করে এই কথা বললেন, ‘তোমার ধারালো কাস্তে লাগাও, পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর ক্ষেতের আঙ্গুরের থোকাগুলি কাট, কারণ সমস্ত আঙ্গুর পেকে গেছে৷’ 19 তখন সেই স্বর্গদূত পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালিয়ে পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর সংগ্রহ করে ঈশ্বরের ক্রোধের মাড়াইকলে ঢেলে দিলেন৷ 20 নগরের বাইরে মাড়াইকলে আঙ্গুরগুলি মাড়াই করা হলে পরে সেই মাড়াইকল থেকে রক্ত নিঃসৃত হল৷ সেই রক্ত উচ্চতায় ঘোড়ার এক বলগা পর্যন্ত এবং দুরত্বে 200 মাইল প্রবাহিত হল৷
1 পরে আমি স্বর্গে আর একটি মহত্ ও বিস্ময়কর চিহ্ন দেখলাম৷ সপ্তম স্বর্গদূতকে সপ্ত আঘাত নিয়ে আসতে দেখলাম৷ এগুলিই শেষতম আঘাত৷ এই আঘাতগুলির দ্বারা ঈশ্বরের মহাক্রোধের অবসান হবে৷ 2 এরপর আমি অগ্নিমিশ্রিত কাঁচের সমুদ্রের মত কিছু একটা দেখলাম৷ যাঁরা সেই পশু, তার মূর্তি ও তার নামের সংখ্যাকে জয় করেছে, তারা ঈশ্বরের দেওয়া বীনা হাতে ধরে সেই কাঁচের সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে ছিল৷ 3 তারা ঈশ্বরের দাস মোশির গীত ও মেষশাবকের গীত গাইছিল: ‘হে প্রভু ঈশ্বর ও সর্বশক্তিমান, মহত্ ও আশ্চর্য তোমার ক্রিয়া সকল, হে জাতিবৃন্দের রাজন! ন্যায় ও সত্য তোমার পথ সকল৷ 4 হে প্রভু, কে না তোমার নামের প্রশংসা করবে? কারণ তুমিই একমাত্র পবিত্র৷ সমস্ত জাতি তোমার সামনে এসে তোমার উপাসনা করবে, কারণ তোমার ন্যায়সঙ্গত কাজ প্রকাশিত হয়েছে৷’ 5 এরপর আমি স্বর্গের মন্দির (ঈশ্বরের পবিত্র উপস্থিতির তাঁবু) দেখলাম৷ মন্দিরটি খোলা ছিল৷ 6 সেই সাতজন স্বর্গদূত যাদের ওপর শেষ সাতটি হানবার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা সেই মন্দির থেকে বাইরে এলেন৷ তাঁরা শুচি শুভ্র মসীনার পোশাক পরিহিত, তাঁদের বুকে সোনার ফিতে বাঁধা৷ 7 পরে সেই চার প্রাণীর মধ্য থেকে একজন ঐ সাতজন স্বর্গদূতদের হাতে একে একে তুলে দিলেন সাতটি সোনার বাটি, সেগুলি যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে জীবন্ত ঈশ্বরের রোষে পরিপূর্ণ৷ 8 তাতে ঈশ্বরের মহিমা ও পরাক্রম হতে উত্পন্ন ধোঁয়ায় মন্দিরটি পরিপূর্ণ হল৷ আর সেই সপ্ত স্বর্গদূতদের সপ্ত আঘাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করতে পারল না৷
1 তখন আমি মন্দির থেকে এক উদাত্ত কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম, তা ঐ সাতজন স্বর্গদূতকে বলছে, ‘যাও, ঈশ্বরের রোষের সেই সাতটি বাটি পৃথিবীতে ঢেলে দাও৷’ 2 তখন প্রথম স্বর্গদূত গিয়ে পৃথিবীর ওপরে তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন, তাতে যাঁরা সেই পশুর ছাপ ধারণ করেছিল, যাঁরা তাঁর মূর্তির উপাসনা করেছিল তাদের গায়ে এক কুত্সিত বেদনাদায়ক ঘা দেখা দিল৷ 3 এরপর দ্বিতীয় স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি সমুদ্রের উপর ঢেলে দিলেন৷ তাতে সমুদ্রের জল মরা মানুষের রক্তের মতো হয়ে গেল, আর তাতে সমুদ্রের মধ্যে যত জীবন্ত প্রাণী ছিল সবই মারা পড়ল৷ 4 এরপর তৃতীয় স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি পৃথিবীর নদনদী ও জলের উত্সে ঢেলে দিলেন, তাতে সব জল রক্ত হয়ে গেল৷ 5 তখন আমি জল সমুদ্রের স্বর্গদূতকে বলতে শুনলাম:‘তুমি আছ ও ছিলে, তুমিই পবিত্র, তুমি ন্যায়পরায়ণ কারণ তুমি এইসব বিষয়ের বিচার করেছ৷ 6 ওরা পবিত্র লোকদের ও ভাববাদীদের রক্তপাত করেছে; আর তার প্রতিফলস্বরূপ আজ তুমিও এই সব লোককে রক্তপান করতে দিয়েছ, এটাই এদের প্রাপ্য়৷’ 7 তখন আমি যজ্ঞবেদীকে বলতে শুনলাম,‘হ্যাঁ, প্রভু ঈশ্বর যিনি সর্বশক্তিমান, তোমার বিচার সত্য ও ন্যায়সঙ্গত৷’ 8 পরে চতুর্থ স্বর্গদূত সূর্যের ওপরে তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন৷ তাতে লোকদের আগুনে পোড়াবার ক্ষমতা সূর্য়কে দেওয়া হল৷ 9 তখন সেই প্রচণ্ড তাপে মানুষদের পোড়ানো হল৷ ঈশ্বরকে তারা অভিশাপ দিতে লাগল৷ এই সমস্ত আঘাতের উপর ঈশ্বরের কর্তৃত্ত্ব ছিল; কিন্তু তারা তবু তাদের মন ফিরালো না আর ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করল না৷ 10 এরপর পঞ্চম স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি সেই পশুর সিংহাসনের ওপর ঢেলে দিলেন৷ ফলে তার রাজ্যের সব জায়গায় ঘোর অন্ধকার হয়ে গেল, আর লোকেরা যন্ত্রণায় নিজেদের জিভ কামড়াতে লাগল৷ 11 বেদনা ও ক্ষতের জন্য তারা স্বর্গের ঈশ্বরকে অভিশাপ দিতে লাগল, কিন্তু তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করল না৷ 12 এরপর ষষ্ঠ দূত তার বাটিটি নিয়ে মহানদী ইউফ্রেটিসের ওপর ঢেলে দিলেন৷ তাতে নদীর জল শুকিয়ে গেল ও প্রাচ্যের রাজাদের জন্য আসার পথ প্রস্তুত হল৷ 13 এরপর আমি দেখলাম সেই সাপের মুখ থেকে, পশুর মুখ থেকে ও ভণ্ড ভাববাদীর মুখ থেকে ব্যাঙের মতো দেখতে একটি একটি করে তিনটি অশুচি আত্মা বেরিয়ে এল৷ 14 সেই অশুচি আত্মারা ভূতের আত্মা, যাঁরা নানা অলৌকিক কাজ করে৷ তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিরুদ্ধে মহাবিচারের দিনে যুদ্ধ করার জন্য সমস্ত জগত্ ঘুরে রাজাদের একত্রিত করল৷ 15 ‘শোন! চোর য়েমন আসে আমি তেমনি আসব৷ ধন্য সেই ব্যক্তি য়ে জেগে থাকে, আর নিজের পোশাক নিজের কাছে রাখে, যাতে তাকে উলঙ্গ হয়ে না বেড়াতে হয় এবং লজ্জায় না পড়তে হয়৷’ 16 পরে ঐ অশুচি আত্মারা ইব্রীয় ভাষায় যাকে হরমাগিদোন বলে সেই স্থানে নিয়ে এসে রাজাদের একত্রিত করল৷ 17 এরপর সপ্তম স্বর্গদূত আকাশের ওপর তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন৷ তখন স্বর্গের মন্দিরের সেই সিংহাসন থেকে শোনা গেল এক পরম উদাত্ত কন্ঠস্বর, ‘সমাপ্ত হল!’ 18 তাতে বিদ্য়ুত্ ঝলক, মেঘগর্জন, বজ্রপাত এবং ভয়ঙ্কর এক ভূমিকম্প হল৷ পৃথিবীতে মানুষের উত্পত্তিকাল থেকে এমন ভূমিকম্প আর কখনও হয় নি৷ 19 সেই মহানগরী তাতে ভেঙ্গে টুকরো হয়ে গেল, আর ধূলিসাত্ হয়ে গেল বিধর্মীদের সব শহর৷ ঈশ্বর মহান বাবিলকে শাস্তি দিতে ভুলে যান নি৷ তিনি তাঁর প্রচণ্ড ক্রোধে পূর্ণ সেই পানপাত্র মহানগরীকে দিলেন৷ 20 এর ফলে সমস্ত দ্বীপ অদৃশ্য হয়ে গেল, আর পর্বতমালা সমভূমি হয়ে গেল৷ 21 আকাশ থেকে মানুষের ওপরে বিরাট বিরাট শিলা পড়তে লাগল, এক একটি শিলা ছিল এক এক মন ভারী; আর এই শিলা বৃষ্টির জন্য লোকরা ঈশ্বরের নিন্দা করতে লাগল, কারণ সেই আঘাত ছিল নিদারুণ ভয়ঙ্কর এক আঘাত৷
1 এরপর ঐ সাতটি বাটি যাদের হাতে ছিল, সেই সাতজন স্বর্গদূতদের মধ্যে একজন এসে আমায় বললেন, ‘এস, বহু নদীর ওপরে য়ে মহাবেশ্যা বসে আছে, আমি তোমাকে তার কি শাস্তি হবে তা দেখাবো৷ 2 তার সঙ্গে পৃথিবীর রাজারা য়ৌন পাপ করেছে, আর পৃথিবীর লোকরা তার অসত্ য়ৌন ক্রিয়ার মদিরা পান করে মত্ত হয়েছে.’ 3 তখন তিনি আত্মার পরিচালনায় আমাকে প্রান্তরের মধ্যে নিয়ে গেলেন৷ সেখানে আমি একটি নারীকে দেখলাম, সে লাল রঙের এক পশুর ওপর বসে আছে৷ সেই পশুটির সাতটা মাথা ও দশটা শিং, তারা সারা গায়ে ঈশ্বর নিন্দা সূচক নাম লেখা ছিল৷ 4 সেই নারীর পরনে ছিল বেগুনী ও লাল রঙের বসন, সোনা ও বহুমূল্য মণি-মুক্তা খচিত অলঙ্কার তার অঙ্গে, তার হাতে সোনার একটি পানপাত্র ছিল, ঘৃন্য দ্রব্যে ও তার য়ৌন পাপ মালিন্যে তা পূর্ণ৷ 5 তার কপালে রহস্যপূর্ণ এক নাম লেখা আছে:মহতী বাবিল, পৃথিবীর বেশ্যাদেরএবং পৃথিবীর যাবতীয় ঘৃন্য জিনিসের জননী৷ 6 আমি দেখলাম, সেই নারী ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের রক্তে মাতাল হয়ে আছে৷ এই পবিত্র লোকরাই যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিল৷সেই নারীকে দেখে আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম৷ 7 সেই স্বর্গদূত আমায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি অবাক হচ্ছ কেন? আমি ঐ নারী ও তার বাহন পশু সম্পর্কে নিগূঢ়তত্ত্ব জানাচ্ছি৷ ঐ পশুটির সাতটি মাথা এবং দশটি শিং আছে৷ 8 তুমি য়ে পশুকে দেখলে, এক সময় সে বেঁচে ছিল, কিন্তু এখন সে বেঁচে নেই৷ সে পাতাল থেকে উঠে আসবে ও তার ধ্বংস স্থানে যাবে৷ জগত্ পত্তনের সময় থেকে পৃথিবী নিবাসী যত লোকের নাম জীবন পুস্তকে লিখিত নেই, তারা ঐ পশুকে দেখে বিস্মিত হবে, কারণ পশুটি একদিন ছিল, এখন আর নেই, কিন্তু পরে আবার আসবে৷ 9 ‘এটা বোঝার জন্য বিজ্ঞ মনের প্রযোজন৷ ঐ সপ্ত মস্তক হচ্ছে সপ্ত পর্বত, যার ওপর ঐ নারী বসে আছে৷ তারা আবার সপ্ত রাজার প্রতীক৷ 10 তাদের মধ্যে প্রথম পাঁচ জনের পতন হয়েছে৷ একজন আছে আর অন্য জন এখনও আসে নি৷ সে এলে কেবল অল্পকালই থাকবে৷ 11 য়ে পশু এক সময়ে জীবিত ছিল, আর এখন নেই, সেই হচ্ছে অষ্টম রাজা৷ এই অষ্টম রাজা সেই সাত রাজার একটি আর সে তার ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে৷ 12 ‘আর তুমি য়ে দশটি শিং দেখলে তা হল দশটি রাজা, তারা এখনও রাজ্য পায় নি, কিন্তু সেই পশুর সঙ্গে এক ঘন্টার জন্য রাজাদের মতো কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতা পাবে৷ 13 এই দশ রাজার উদ্দেশ্য এক, তারা নিজেদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ত্ব সেই পশুকে দেবে৷ 14 তারা মেষশাবকের সঙ্গে যুদ্ধ করবে কিন্তু মেষশাবক তাদের পরাজিত করবে কারণ তিনি প্রভুদের প্রভু ও রাজাদের রাজা৷ তিনি তাঁর মনোনীত এবং বিশ্বস্ত লোকদের সাহায্যে তাদের পরাজিত করবেন৷ এই লোকদের তিনি আহ্বান করেছিলেন৷’ 15 আর স্বর্গদূত আমায় বললেন, ‘দেখ, ঐ গণিকা য়ে জলের ওপর বসে আছে, সেই জল হচ্ছে জাতিগণ, প্রজাগণ, জনগণ ও ভিন্ন ভাষাভাষীর লোকসমুহ৷ 16 তুমি য়ে দশটা শিং ও পশুকে দেখলে, তারা ঐ গণিকাকে ঘৃণা করবে৷ তারা তার সব কিছু কেড়ে নিয়ে তাকে উলঙ্গ করে তার দেহটাকে খাবে, তারপর তাকে আগুনে পুড়িয়ে দেবে৷ 17 এসব ঘটবে কারণ ঈশ্বর তাঁর ইচ্ছা পূরণ করতে তাদের হৃদয়ে এই প্রবৃত্তি দেবেন৷ সেজন্য তারা সকলে একচিত্ত হয়ে য়ে পর্যন্ত ঈশ্বরের বাক্য সফল না হয় সেই পর্যন্ত নিজের নিজের ক্ষমতা সেই পশুকে দেবে, যাতে সে রাজত্ব করতে পারে৷ 18 তুমি য়ে নারীকে দেখলে সে ঐ মহানগরীর প্রতীক, য়ে পৃথিবীর রাজাদের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করে৷’
1 এইসব ঘটনার পর আমি আর একজন স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম৷ তিনি মহাপরাক্রান্ত স্বর্গদূত, তাঁর জ্যোতি সমস্ত পৃথিবীকে আলোকিত করে তুলল৷ 2 তিনি প্রবল শব্দে চেঁচিয়ে উঠলেন:‘পতন হল! মহানগরী বাবিলের পতন হল! সে ভূতের আবাসে পরিণত হয়েছে৷ সেই নগরী হয়েছে সব রকমের অশুচি আত্মার আবাস৷ সে যতো অশুচি পাখীদের বাসা এবং যতো নোংরা ও ঘৃন্য পশুদের নগরীতে পরিণত হয়েছে৷ 3 পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তার অসত্ য়ৌন পাপের মদিরা ও ঈশ্বরের রোষ মদিরা পান করেছে৷ পৃথিবীর রাজারা তার সঙ্গে ব্যভিচার করেছে; আর পৃথিবীর ব্যবসাযীরা তার অসংযত বিলাসিতার সুবাদে ধনবান হয়ে উঠেছে৷’ 4 এরপর আমি স্বর্গ থেকে আর একটি কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম, সে বলছে:‘হে আমার প্রজারা, ওখান থেকে বেরিয়ে এস, তোমরা য়েন ওর পাপের ভাগী না হও; আর ওর প্রাপ্য আঘাত য়েন তোমাদের ওপর না আসে৷ 5 কারণ ওর পাপ স্তূপীকৃত হয়ে গগণচুম্বী হয়েছে; আর ঈশ্বর ওর সব অপরাধ স্মরণ করেছেন৷ 6 সে অপরের সঙ্গে য়েমন ব্যবহার করেছে, তোমরাও তার প্রতি সেরূপ ব্যবহার কর৷ সে য়েমন কাজ করেছে, তোমরা তার দ্বিগুণ প্রতিফল তাকে দাও৷ অপরের জন্য পানপাত্রে সে য়ে পরিমাণ মেশাতো তোমরা তার জন্য সেই পাত্রে দ্বিগুণ মেশাও৷ 7 সে (বাবিল) যত অহঙ্কার ও বিলাসিতায় জীবন কাটাতো তোমরা তাকে তত যন্ত্রণা ও মনোকষ্ট দাও৷ কারণ সে নিজের বিষয়ে বলত, ‘আমি রাণী, রাণীর মতোই সিংহাসনে বসে আছি৷ আমি বিধবা নই, আর আমি কখনই দুঃখ পাব না৷ 8 অতএব এক দিনের মধ্যেই তার ওপর এই আঘাত আসবে; মৃত্যু, শোক ও দুর্ভিক্ষ আর আগুনে পুড়িয়ে তাকে ধ্বংস করা হবে৷ কারণ প্রভু ঈশ্বর যিনি তার বিচার করেছেন তিনি সর্বশক্তিমান৷’ 9 ‘জগতের য়ে সব রাজারা তার সঙ্গে য়ৌন পাপে লিপ্ত হয়েছে ও বিলাসে কাটিয়েছে, তারা তাকে জ্বলতে দেখে ও তার থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে বিলাপ ও হাহাকার করবে৷’ 10 তার যন্ত্রণার ভয়াবহতা দেখে ভয়ে দূরে দাঁড়িয়ে বলবে:‘হায়! হায়! হে মহান নগরী! ও শক্তিশালী বাবিল নগরী! এক ঘন্টার মধ্যেই তোমার ওপরে শাস্তি নেমে এল!’ 11 আর পৃথিবীর ব্যবসাযীরা তার (বাবিলের) জন্য কাঁদছে ও হাহাকার করছে, কারণ তাদের বাণিজ্য দ্রব্য আর কেউ কেনে না৷ 12 তাদের বাণিজ্যদ্রব্যগুলি ছিল: সোনা, রূপো, মণি, মুক্তা, মসীনার কাপড়, বেগুনী রঙের কাপড়, রেশমের কাপড়, লাল রঙের কাপড়, সব রকমের চন্দন কাঠ, হাতির দাঁতের তৈরী বিভিন্ন জিনিসপত্র, মূল্যবান কাঠ, পিতলের, কাঁসার, লোহার ও মার্বেল পাথরের সব রকমের পাত্র, 13 আর দারুচিনি, মশলা, ধূপ, সুগন্ধি নির্যাস, মস্তকি, গুগ্গুল, মদ ও জলপাইয়ের তেল, ময়দা, আটা, গরু, মেষ, ঘোড়া গাড়ী আর মানুষের দেহ এবং প্রাণও৷ সেই ব্যবসাযীরা কেঁদে কেঁদে বলবে: 14 ‘হে বাবিল, য়ে সব ভাল ভাল জিনিসের প্রতি তোমার মন পড়ে ছিল তার সবই তোমার কাছ থেকে চলে গেছে৷ তোমার সব রকমের বিলাসিতা ও শোভা প্রাচুর্য়্য সবই ধ্বংস হয়ে গেছে৷ তুমি তা আর কখনই দেখতে পাবে না৷’ 15 ‘ঐ সব জিনিসের ব্যবসাযীরা তার ধনে ধনী হয়েছিল, তারা তার যন্ত্রণা দেখে ভয়ে দূরে দাঁড়িয়ে কাঁদবে,আর হাহাকার করে বলবে: 16 ‘হায়! হায়! হায় মহানগরী! সে মসীনার কাপড়, বেগুনী রঙের কাপড় ও লাল রঙের কাপড় পরত৷ সে সোনা, মণি, মুক্তা খচিত গয়না পরত৷ 17 এক ঘন্টার মধ্যে তার সেই মহাসম্পদ ধ্বংস হল!’‘আর প্রত্যেক জাহাজের প্রধান কর্মচারীরা, জলপথের যাত্রীরা, নাবিকরা ও সমুদ্রেই জীবিকা যাদের, তারা সকলে বাবিল থেকে সরে দাঁড়ালো৷ 18 জ্বলন্ত বাবিলের ধোঁয়া দেখে তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘আর কোন নগর এই মহানগরীর মত ছিল না!’ 19 তারা সকলে নিজেদের মাথায় ধুলো ছিটিয়ে হাহাকার করে বলতে লাগল:‘হায়! হায়! ঐ মহানগরীর কি দুর্দশাই না হল! যার সম্পদে সমুদ্রগামী জাহাজের কর্তারা ধনবান হত, এক ঘন্টার মধ্যে সে ধ্বংস হয়ে গেল৷ 20 এই জন্য হে স্বর্গ উল্লসিত হও! হে ঈশ্বরের পবিত্র লোকেরা! হে প্রেরিতেরা আর ভাববাদীরা, উদ্ভাসিত হও! কারণ সে তোমাদের প্রতি য়ে অন্যায় করেছে, ঈশ্বর তার শাস্তি তাঁকে দিয়েছেন৷’ 21 পরে এক পরাক্রান্ত স্বর্গদূত খুব বড় য়াঁতার মতো পাথর তুলে নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দিয়ে বললেন:‘এই পাথরটির মতো মহানগরী বাবিলকে ছুঁড়ে ফেলা হবে; আর চিরকালের মতো সে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে৷ 22 তোমার মধ্যে বীণাবাদক, বাঁশীবাদক, তূরীবাদক ও গায়কদের গান-বাজনা আর কখনও শোনা যাবে না৷ তোমার মধ্যে আর কখনও কোন শিল্পকারকে পাওয়া যাবে না, গম ভাঙ্গার যাঁতার শব্দ আর কখনও শোনা যাবে না৷ 23 তোমার মধ্যে আর কখনও প্রদীপ জ্বলবে না, বর-কণের কথাবার্তা আর কখনও শোনা যাবে না৷ তোমার ব্যবসাযীরা পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত হয়েছিল৷ তোমার তন্ত্র-মন্ত্রের জাদুতে সমস্ত জাতি ভ্রান্ত হয়েছিল৷ 24 বাবিল সমস্ত ভাববাদী, ঈশ্বরের পবিত্র লোক, আর পৃথিবীতে যত লোককে হত্যা করা হয়েছে, তার রক্তপাতের দোষে দোষী৷’
1 এরপর আমি স্বর্গে এক বিশাল জনতার কলরব শুনলাম৷ সেই লোকরা বলছে:‘হাল্লিলুইয়া! জয়, মহিমা ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই, 2 কারণ তাঁর বিচারসকল সত্য ও ন্যায়৷ তিনি সেই মহান গণিকার বিচার নিষ্পন্ন করেছেন, য়ে তার য়ৌন পাপ দ্বারা পৃথিবীকে কলুষিত করত৷ ঈশ্বরের দাসদের রক্তপাতের প্রতিশোধ নিতে ঈশ্বর সেই বেশ্যাকে শাস্তি দিয়েছেন৷’ 3 তারপর স্বর্গের সেই লোকেরা বলে উঠল:‘হাল্লিলুইয়া! সেই বেশ্যা ভস্মীভূত হবে এবং যুগ যুগ ধরে তার ধোঁয়া উঠবে৷’ 4 এরপর সেই চব্বিশজন প্রাচীন ও চারজন প্রাণী সিংহাসনে যিনি বসেছিলেন, সেই ঈশ্বরের চরণে মাথা নত করে তাঁর উপাসনা করে বললেন:‘আমেন, হাল্লিলুইয়া!’ 5 পরে সিংহাসন থেকে এক বাণী নির্গত হল, কে য়েন বলে উঠল:‘হে আমার দাসরা, তোমরা যাঁরা তাঁকে ভয় কর, তোমরা ক্ষুদ্র কি মহান, তোমরা সকলে ঈশ্বরের প্রশংসা কর!’ 6 পরে আমি বিরাট জনসমুদ্রের রব, প্রবল জলকল্লোল ও প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এই বাণী শুনলাম:‘হাল্লিলুইয়া! আমাদের প্রভু যিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তিনি রাজত্ব শুরু করেছেন৷ 7 এস, আমরা আনন্দ ও উল্লাস করি, আর তাঁর মহিমা করি, কারণ মেষশাবকের বিবাহের দিন এল৷ তাঁর বধূও বিবাহের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে৷ 8 তাকে পরিধান করতে দেওয়া হল শুচি শুভ্র উজ্জ্বল মসীনার বসন৷’সেই মসীনার বসন হল ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সত্কর্মের প্রতীক৷ 9 এরপর তিনি আমায় বললেন, ‘তুমি এই কথা লেখ৷ ধন্য তারা, যাঁরা মেষশাবকের বিবাহে নিমন্ত্রিত হয়েছে৷’ তারপর দূত আমায় বললেন, ‘এগুলি ঈশ্বরের সত্য বাক্য৷’ 10 আমি তাঁকে উপাসনা করার জন্য তাঁর চরণে মাথা নত করলাম৷ কিন্তু স্বর্গদূত আমায় বললেন, ‘আমার উপাসনা করো না! আমি তোমারই মত এবং তোমার য়ে ভাইরা যীশুর সাক্ষ্য ধরে রয়েছে তাদের মতো এক দাস৷ ঈশ্বরেরই উপাসনা কর, কারণ ভাববাদীর আত্মাই হল যীশুর সাক্ষ্য৷’ 11 এরপর আমি দেখলাম, স্বর্গ উন্মুক্ত, আর সেখানে সাদা একটা ঘোড়া দাঁড়িয়ে আছে৷ তার ওপর যিনি বসে আছেন, তাঁর নাম ‘বিশ্বস্ত ও সত্যময়’ আর তিনি ন্যায়সিদ্ধ বিচার করেন ও যুদ্ধ করেন৷ 12 আগুনের শিখার মতো তাঁর চোখ, আর তাঁর মাথায় অনেকগুলি মুকুট আছে; সেই মুকুটগুলির উপর এমন এক নাম লেখা আছে, যার অর্থ তিনি ছাড়া অন্য আর কেউ জানে না৷ 13 রক্তে ডোবানো পোশাক তাঁর পরণে; তাঁর নাম ঈশ্বরের বাক্য৷ 14 স্বর্গের সেনাবাহিনী সাদা ঘোড়ায় চড়ে তাঁর পেছনে পেছনে চলেছিল৷ তাদের পরণে ছিল শুচিশুভ্র মসীনার পোশাক৷ 15 একটি ধারালো তরবারি তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে আসছিল, যা দিয়ে তিনি পৃথিবীর সমস্ত জাতিকে আঘাত করবেন৷ লৌহ যষ্টি হাতে জাতিবৃন্দের ওপর তিনি শাসন পরিচালনা করবেন৷ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধের কুণ্ডে তিনি সব দ্রাক্ষা মাড়াই করবেন৷ 16 তাঁর পোশাকে ও উরুতে লেখা আছে এই নাম:‘রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু৷’ 17 পরে আমি দেখলাম, একজন স্বর্গদূত সূর্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন৷ তিনি উঁচু আকাশ পথে য়ে সব পাখি উড়ে যাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে খুব জোরে চিত্কার করে বললেন: ‘এস, ঈশ্বর য়ে মহাভোজের আযোজন করেছেন, তার জন্য এক জায়গায় জড়ো হও৷ 18 এক, রাজাদের, প্রধান সেনাপতিদের ও বীরপুরুষদের মাংস, ঘোড়া ও ঘোড়-সওয়ারদের মাংস, স্বাধীন অথবা ক্রীতদাস, ক্ষুদ্র অথবা মহান সকল মানুষের মাংস খেয়ে যাও৷’ 19 তখন আমি দেখলাম ঐ ঘোড়ার ওপর যিনি বসেছিলেন, তিনি ও তাঁর সৈন্যদের সঙ্গে সেই পশু ও পৃথিবীর রাজারা তাদের সমস্ত সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করার জন্য একত্র হল৷ 20 কিন্তু সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীকে ধরা হল৷ এই সেই ভণ্ড ভাববাদী, য়ে পশুর জন্য অলৌকিক কাজ করেছিল৷ এই অলৌকিক কাজের দ্বারা ভণ্ড ভাববাদী তাদের প্রতারণা করেছিল যাদের সেই পশুর চিহ্ন ছিল এবং যাঁরা তার উপাসনা করেছিল৷ ভণ্ড ভাববাদী এবং পশুটিকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ 21 যাঁরা বাকী থাকল তারা সকলে সেই সাদা ঘোড়ার সওয়ারীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ধারালো তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়ল; আর সমস্ত পাখি তাদের মাংস খেয়ে তৃপ্ত হল৷
1 এরপর আমি একজন স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম৷ সেই স্বর্গদূতের হাতে ছিল অতল গহ্বরের চাবি আর একটা বড় শেকল৷ 2 তিনি সেই নাগকে ধরলেন, এ সেই পুরানো সাপ, দিয়াবল বা শয়তান, তিনি তাকে হাজার বছরের জন্য বেঁধে রাখলেন৷ 3 স্বর্গদূত তাকে অতল গহ্বরের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে গহ্বরের মুখ বন্ধ করলেন ও তা সীলমোহর করে দিলেন, য়েন হাজার বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সে পৃথিবীর জাতিবৃন্দকে আর বিভ্রান্ত করতে না পারে৷ ঐ হাজার বছর পূর্ণ হলে কিছু কালের জন্য তাকে ছাড়া হবে৷ 4 পরে আমি কয়েকটি সিংহাসন দেখলাম; আর তার ওপর যাঁরা বসে আছেন তাদের সকলকে বিচার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে৷ যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য ও ঈশ্বরের বাণী প্রচারের জন্য যাদের শিরশ্ছেদ করা হয়েছিল, যাঁরা সেই পশুকে ও তার মূর্ত্তিকে পূজা করে নি, নিজেদের কপালে বা হাতে তার ছাপ নেয় নি, তাদের প্রাণ দেখতে পেলাম৷ আর তারা সকলে পুনর্জীবিত হয়ে সেই হাজার বছর ধরে খ্রীষ্টের সঙ্গে রাজত্ব করল৷ 5 য়ে পর্যন্ত সেই হাজার বছর শেষ না হল, সে পর্যন্ত বাকি মৃত লোকেরা পুনরুত্থিত হল না৷ এই হল প্রথম পুনরুত্থান৷ 6 য়ে কেউ এই প্রথম পুনরুত্থানের ভাগী হয় সে ধন্য ও পবিত্র৷ এই সব লোকদের ওপর দ্বিতীয় মৃত্যুর আর কোন কর্তৃত্ত্ব নেই৷ তারা বরং খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের যাজকরূপে তাঁর সঙ্গে হাজার বছর ধরে রাজত্ব করবে৷ 7 সেই হাজার বছর শেষ হলে শয়তানকে অতলস্পর্শী গহ্বরের কারাগার থেকে মুক্ত করা হবে৷ 8 সে সারা পৃথিবী জুড়ে সমস্ত জাতিকে বিভ্রান্ত করবে৷ সে গোগ ও মাগোগকেও বিভ্রান্ত করবে, শয়তান যুদ্ধের উদ্দেশ্যে তাদের একত্র করবে৷ তাদের সংখ্যা সমুদ্র সৈকতের অগণিত বালুকণার মতো৷ 9 তারা পৃথিবীর ওপর দিয়ে এগিয়ে চলবে, আর ঈশ্বরের লোকদের শিবির ও ঈশ্বরের প্রিয় নগরটি অবরোধ করবে৷ কিন্তু স্বর্গ থেকে আগুন নেমে শয়তানের সৈন্যদের ধ্বংস করবে৷ 10 তখন সেই শয়তান য়ে তাদের ভ্রান্ত করেছিল তাকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হবে, য়েখানে সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীদের আগেই ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে৷ সেখানে যুগ যুগ ধরে দিনরাত তারা যন্ত্রণা ভোগ করবে৷ 11 পরে আমি এক বিরাট শ্বেত সিংহাসন ও তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁকে দেখলাম৷ তাঁর সামনে থেকে পৃথিবী ও আকাশ বিলুপ্ত হল এবং তাদের কোন অস্তিত্ব রইল না৷ 12 আমি দেখলাম, ক্ষুদ্র অথবা মহান সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ পরে কয়েকটি গ্রন্থ খোলা হল এবং আরও একটি গ্রন্থ খোলা হল৷ সেই গ্রন্থটির নাম জীবন পুস্তক৷ সেই গ্রন্থগুলিতে মৃতদের প্রত্যেকের কাজের বিবরণ লিপিবদ্ধ ছিল এবং সেই অনুসারে তাদের বিচার হল৷ 13 য়ে সব লোক সমুদ্রগর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল সমুদ্র তাদের সঁপে দিল, আর মৃত্যু ও পাতাল নিজেদের মধ্যে য়ে সব মৃত ব্যক্তি ছিল তাদের সমর্পণ করল৷ তাদের কৃতকর্ম অনুসারে তাদের বিচার হল৷ 14 পরে মৃত্যু ও পাতাল আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ এই আগুনের হ্রদই হল আসলে দ্বিতীয় মৃত্যু৷ 15 জীবন পুস্তকে যাদের নাম লেখা দেখতে পাওয়া গেল না, তাদের সকলকে আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷
1 এরপর আমি এক নতুন স্বর্গ ও নতুন পৃথিবী দেখলাম, কারণ প্রথম স্বর্গ ও প্রথম পৃথিবী বিলুপ্ত হয়ে গেছে; এখন সমুদ্র আর নেই৷ 2 আমি আরো দেখলাম, সেই পবিত্র নগরী, নতুন জেরুশালেম, স্বর্গ হতে ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে আসছে৷ কনে য়েমন তার বরের জন্য সাজে, সেও সেইভাবে প্রস্তুত হয়েছিল৷ 3 পরে আমি সিংহাসন থেকে এক উদাত্ত নির্ঘোষ শুনতে পেলাম, যা ঘোষণা করছে, ‘এখন মানুষের মাঝে ঈশ্বরের আবাস, তিনি তাদের সঙ্গে বাস করবেন ও তাদের ঈশ্বর হবেন৷ 4 তিনি তাদের চোখের সব জল মুছিয়ে দেবেন৷ মৃত্যু, শোক, কান্না যন্ত্রণা আর থাকবে না, কারণ পুরানো বিষয়গুলি বিলুপ্ত হল৷ 5 আর যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তিনি বললেন, ‘দেখ! আমি সব কিছু নতুন করে করছি!’ পরে তিনি বললেন, ‘লেখ, কারণ এসব কথা সত্য ও বিশ্বাসয়োগ্য৷’ 6 যিনি সিংহাসনে বসেছিলেন পরে তিনি আমায় বললেন, ‘সম্পন্ন হল! আমি আলফা ও ওমেগা, আমিই আদি ও অন্ত৷ য়ে তৃষ্ণার্ত তাকে আমি জীবন জলের উত্স থেকে বিনামূল্যে জল দান করব৷ 7 য়ে বিজযী হয় সে-ই এসবের অধিকারী হবে৷ আমি তার ঈশ্বর হব, আর সে হবে আমার পুত্র৷ 8 কিন্তু যাঁরা ভীরু, অবিশ্বাসী ঘৃন্যলোক, নরঘাতক, য়ৌনপাপে পাপগ্রস্ত, মায়াবী, প্রতিমাপূজারী, যাঁরা মিথ্যাবাদী, এদের সকলের স্থান হবে সেই আগুন ও জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে; এই হল দ্বিতীয় মৃত্যু৷’ 9 আর য়ে সপ্ত স্বর্গদূতদের কাছে সপ্ত সন্তাপপূর্ণ বাটি ছিল তাদের মধ্যে শেষ সন্তাপের বাটিটি যিনি ঢেলেছিলেন, তিনি এসে আমায় বললেন, ‘এস, আমি তোমাকে মেষশাবকের বধূকে দেখাব৷’ 10 আমি আত্মার আবেশে ছিলাম, সেই অবস্থায় তিনি আমাকে একটা খুব বড় উঁচু পাহাড়ের ওপর নিয়ে গেলেন আর স্বর্গে ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে পবিত্র নগরী, জেরুশালেম নেমে আসছিল তা দেখালেন৷ 11 তা ছিল ঈশ্বরের মহিমায় পূর্ণ বহুমূল্য মণির মতো, তার উজ্জ্বলতা সূর্য়কান্ত মণির মতো উজ্জ্বল ও স্বচ্ছ৷ 12 নগরের প্রাচীরটি খুব উঁচু এবং বড় ছিল৷ প্রাচীরের বারোটি ফটক ছিল৷ নগরের বারোটি ফটকে বারোজন স্বর্গদূত ছিল৷ সেই দ্বারগুলির ওপর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর নাম লেখা ছিল৷ 13 পূর্বদিকে তিনটি দরজা, উত্তরদিকে তিনটি দরজা, দক্ষিণ দিকে তিনটি দরজা ও পশ্চিম দিকে তিনটি দরজা৷ 14 নগরের সেই প্রাচীরের বারোটি ভিত পাথর ছিল, আর সেই সব ভিত পাথরের ওপর মেষশাবকের বারোজন প্রেরিতের নাম লেখা আছে৷ 15 স্বর্গদূত, যিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর হাতে ঐ নগরটি, তার সব দরজা ও তার প্রাচীর মাপবার জন্য সোনার মাপকাঠি ছিল৷ 16 ঐ নগরটি ছিল চারকোণা, দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থে সমান৷ তিনি নগরটি সেই মাপকাঠি দিয়ে মাপলে দেখা গেল তা দৈর্য়্ঘে প্রস্থে ও উচ্চতায় সমান এবং সেই মাপ হল 1500 মাইল৷ 17 পরে স্বর্গদূত নগরের প্রাচীর মাপলে দেখা গেল তা 144 হাত উঁচু৷ স্বর্গদূত মানুষের হাতের মাপ অনুযাযী তা মাপলেন, এই মাপই তিনি ব্যবহার করেছিলেন৷ 18 প্রাচীরের গাঁথনি সূর্য়কান্তমণির এবং নগরটি ছিল শুদ্ধ সোনায় তৈরী, য়েটা ছিল কাঁচের মতো স্বচ্ছ৷ 19 নগরের প্রাচীরের ভিত পাথরগুলিতে সব ধরণের মূল্যবান মণি খচিত ছিল৷ প্রথমটি সূর্য়কান্ত মণির, দ্বিতীয়টি নীলকান্ত মণির, তৃতীয়টি তাম্রমণির, চতুর্থটি পান্নামণির, পঞ্চমটি বৈদুর্য়মণির; 20 ষষ্ঠটি লাল বর্ণ মণির, সপ্তমটি স্বর্ণ মণির, অষ্টমটি ফিরোজা মণির, নবমটি পোখরাজ মণির, দশমটি হলুদ সবুজ বর্ণ মণির, একাদশতমটি রক্তাভ ফলসাবর্ণ মণির, দ্বাদশতমটি জামীরা মণির৷ 21 বারোটি সিংহদ্বার হচ্ছে বারোটি মুক্তা, একটি দ্বার এক একটি মুক্তার তৈরী৷ নগরের সড়কটি কাঁচের মতো স্বচ্ছ খাঁটি সোনার তৈরী৷ 22 সেই নগরে আমি কোন মন্দির দেখলাম না, কারণ প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ও মেষশাবক হচ্ছেন সেই নগরের মন্দির৷ 23 নগরটি আলোকিত করার জন্য সূর্য় ও চাঁদের প্রযোজন ছিল না, কারণ ঈশ্বরের মহিমা তা আলোকময় করে, আর মেষশাবকই তার আলোস্বরূপ৷ 24 এর আলোতে সমস্ত জাতি চলাফেরা করবে, আর জগতের রাজারা তাদের প্রতাপ সেখানে নিয়ে আসবে৷ 25 ঐ নগরের সিংহদ্বারগুলি কোন দিন কখনও বন্ধ হবে না, কারণ সেখানে কখনও কোন রাত্রি হবে না, 26 আর জাতিবৃন্দের সমস্ত প্রতাপ ও ঐশ্বর্য সেই নগরের মধ্যে আনা হবে৷ 27 অশুচি কোন কিছু শহরে প্রবেশ করতে পারবে না৷ কোন মানুষ য়ে ঘৃন্য কাজ করে অথবা য়ে অসত্ সে কখনও নগরে প্রবেশ করতে পারবে না৷ কেবল যাদের নাম মেষশাবকের জীবন পুস্তকে লেখা আছে শুধু তারাই সেখানে প্রবেশ করতে পারবে৷
1 পরে তিনি আমাকে জীবনদাযী জলের একটি নদী দেখালেন৷ এই নদী স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ, তা ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন থেকে বয়ে চলেছে৷ 2 নদীটি নগরের রাজপথের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে৷ নদীর তীরেই জীবনবৃক্ষ আছে৷ বছরের বারো মাসই তাতে বারো বার ফল ধরে, প্রতি মাসে নতুন নতুন ফল হয়৷ সেই জীবন বৃক্ষের পাতা জাতিবৃন্দের আরোগ্য দায়ক৷ 3 নগরীতে অভিশপ্ত কোন কিছুই থাকবে না, সেখানে অধিষ্ঠিত থাকবে ঈশ্বর ও মেষশাবকের সিংহাসন৷ সেখানে ঈশ্বরের দাসরা তাঁর উপাসনা করবে, 4 তারা তাঁর শ্রীমুখ দর্শন করবে; আর ঈশ্বরের নাম তাদের কপালে লেখা থাকবে৷ 5 সেখানে রাত্রি আর হবে না, প্রদীপের আলো বা সূর্যের আলোর কোন প্রযোজন হবে না, কারণ প্রভু ঈশ্বর তখন সবার ওপর তাঁর আলো ছড়িয়ে দেবেন; আর তারা যুগে যুগে চিরকাল রাজার মত রাজত্ব করবে৷ 6 তখন স্বর্গদূত আমায় বললেন, ‘এই সমস্ত কথা সত্য ও বিশ্বাসয়োগ্য৷ প্রভু, যিনি সেই ভাববাদীদের আত্মার ঈশ্বর, তিনি তাঁর স্বর্গদূতকে পাঠিয়েছেন তাঁর দাসদের সেই সবকিছু দেখাবার জন্য, যা শীঘ্রই ঘটবে৷’ 7 ‘শোন, আমি শিগ্গির আসছি৷ ধন্য সেই জন, য়ে এই পুস্তকের লিখিত ভাববাণী পালন করে৷’ 8 আমি য়োহন এই সব দেখলাম ও শুনলাম৷ এইসব দেখা ও শোনার পর, য়ে দূত আমাকে এই সব দেখাচ্ছিলেন, তাঁর আরাধনার জন্য আমি তাঁর পায়ের ওপর উপুড় হয়ে পড়লাম৷ 9 তিনি তখন আমায় বললেন, ‘আমার উপাসনা করো না! আমি তোমার ও তোমার ভাইদের অর্থাত্ ভাববাদীদের মত একজন দাস৷ আমি সেই সমস্ত লোকের মত যাঁরা এই পুস্তকের বাক্য মেনে চলে৷ একমাত্র ঈশ্বরেরই উপাসনা কর৷’ 10 সেই স্বর্গদূত আমাকে আরো বললেন, ‘তুমি এই পুস্তকের ভাববাণীগুলি গোপন রেখো না, সে সব কথা পূর্ণ হবার সময় হয়ে এসেছে৷ 11 য়ে অন্যায় করছে, সে আরো অন্যায় করুক; আর য়ে কলুষিত, সে কলুষিত থাকুক৷ য়ে ধার্মিক সে এর পরে আরো ধর্মাচরণ করুক; আর য়ে পবিত্র সে আরো পবিত্র হোক্৷’ 12 ‘শোন! আমি শিগ্গির আসছি! আমি দেবার জন্য পুরস্কার নিয়ে আসছি, যার য়েমন কাজ সেই অনুসারে সে পুরস্কার পাবে৷ 13 আমি আল্ফাও ওমেগা, প্রথম ও শেষ, আদি ও অন্ত৷ 14 ‘যাঁরা তাদের পোশাক ধোয় তারা ধন্য৷ তারা জীবন বৃক্ষের ফল খাবার অধিকারী হবে ও সকল দ্বার দিয়ে নগরে প্রবেশ করতে পারবে৷ 15 আর নগরের বাইরে আছে সেই সব কুকুররা, যাঁরা মায়াবী, লম্পট, খুনে, প্রতিমাপূজক, আর যাঁরা মিথ্যা বলতে ভালবাসে ও মিথ্যা কথা বলে৷ 16 আমি যীশু, আমি আমার স্বর্গদূতকে পাঠালাম য়েন সে মণ্ডলীদের জন্য তোমাকে এসব কথা বলে৷ আমি দাযূদের মূল ও বংশধর৷ আমি উজ্জ্বল প্রভাতী তারা৷’ 17 আত্মা ও বধূ বলছেন, ‘এস!’ য়ে একথা শোনে সেও বলুক, ‘এস!’ আর য়ে পিপাসিত সেও আসুক৷ য়ে চায় সে এসে বিনামূল্যে জীবন জল পান করুক৷ 18 এই পুস্তকের সব ভাববাণী যাঁরা শুনবে, আমি তাদের দৃঢ়ভাবে বলছি, এই পুস্তকে যা কিছু লেখা হল, কেউ যদি তার সঙ্গে কিছু য়োগ করে তবে ঈশ্বর এই পুস্তকে য়ে সব সন্তাপের উল্লেখ আছে তা তার জীবনে য়োগ করবেন৷ 19 কেউ যদি এই ভাববাণী পুস্তকের বাক্য থেকে কিছু বাদ দেয়, তবে ঈশ্বর এই পুস্তকে য়ে জীবনবৃক্ষের কথা লেখা আছে তা থেকে ও পবিত্র নগর থেকে তার অংশ বাদ দেবেন৷ 20 যীশু যিনি বলছেন এই বিষয়গুলি সত্য, এখন তিনিই বলছেন, ‘হ্যাঁ, আমি শিগ্গির আসছি৷’আমেন৷ এস, প্রভু যীশু! 21 প্রভু যীশুর অনুগ্রহ তাঁর সকল লোকের সহবর্তী হোক্৷